Title
stringlengths
1
106
Time
stringlengths
28
73
Content
stringlengths
0
42.5k
Tags
stringlengths
0
210
ধানমন্ডি লেক থেকে শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১২:১০ | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১২:৪৪
রাজধানীর ধানমন্ডি লেক থেকে হৃদয়ঈম ঋদ্ধ (১৭) নামের এক শিক্ষার্থীর লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। রোববার রাত আটটার দিকে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা তার লাশ উদ্ধার করেন।নিহত ঋদ্ধ রাজধানীর আদাবর থানাধীন শেখেরটেক ৫ নম্বর রোডের ৪৯ নম্বর বাসায় পরিবারের সঙ্গে থাকতেন। তার বাবার নাম নীলমণি ভট্টাচার্য।  ঋদ্ধ ডেফোডিল ইউনিভার্সিটি কলেজের উচ্চমাধ্যমিক প্রথম বর্ষের শিক্ষার্থী ছিলেন।ধানমন্ডি থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) রুবেল আজাদ সাংবাদিকদের জানান, রোববার বিকালে লেকের পানিতে সাঁতার কেটে লেকের মাঝখানে গিয়ে ডুবে যান তিনি। আশপাশের লোকজন দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেন। পরে ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা তাকে মৃত অবস্থায় উদ্ধার করেন। খবর পেয়ে সোমবার সকালে পরিবারের সদস্যরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ মর্গে এসে ঋদ্ধের লাশ শনাক্ত করেন।পরে ময়নাতদন্ত শেষে বিকেলে তার লাশ বাসায় নিয়ে যায় পরিবার।
ধানমন্ডি লেক, লাশ উদ্ধার
অনলাইনে ক্যাসিনোর মূলহোতা সেলিমের বাসায় র‌্যাবের অভিযান
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১২:৩৯ | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৪৮
অনলাইনে ক্যাসিনো চালিয়ে বিদেশে অর্থ পাচারের অভিযোগে আটক সেলিম প্রধানের গুলশানের বাসায় অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাপিড অ্যাকশান ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব-১)।সোমবার রাত ১০টার দিকে গুলশান-২ এর ৯৯ নম্বর সড়কে অবস্থিত ১১/এ, 'মমতাজ ভিশন' নামের ছয় তলা বাড়িটির পঞ্চম তলায় অভিযান শুরু করেন র‌্যাব সদস্যরা। এ রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত রাত সাড়ে ১২টার সময়ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।র‌্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক লে. কর্নেল সারওয়ার-বিন-কাশেম গণমাধ্যমকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।এর আগে সোমবার দুপুরে থাই এয়ারওয়েজের একাটি বিমানে ঢাকা ছাড়ার সময় হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে বিমান থেকে তাকে নামিয়ে আনা হয়। পরে তাকে র‌্যাব-১ এর কার্যালয়ে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদ শেষে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সেলিম প্রধানের গুলশানের বাসায় অভিযান চালাচ্ছে র‌্যাব।
অনলাইনে ক্যাসিনো, বিদেশে অর্থ পাচার, সেলিম প্রধান, র‌্যাবের অভিযান
গণতন্ত্রে ঐকমত্য চাই
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:২৯
গণতন্ত্র নিয়ে আলোচনা-পর্যালোচনা চলছেই। আমাদের দেশে গণতন্ত্রের হাল-হকিকতসম্পর্কে উদ্বেগেরও শেষ নেই। গণতন্ত্রের প্রকৃত সংজ্ঞাসূত্র মোতাবেকবাংলাদেশে গণতন্ত্র বিদ্যমান কি-না, এ নিয়ে বিস্তর তর্ক আছে। সামাজিক ওরাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে গণতন্ত্র অনেক পুরনো এবং আদর্শ হিসেবেমানবসভ্যতার মতোই প্রাচীন। অনেক রাষ্ট্রবিজ্ঞানীর মতে, আদিম সমাজে বিদ্যমানছিল এক ধরনের সমতাভিত্তিক সমবণ্টনকেন্দ্রিক ব্যবস্থা। বিদ্যমান ছিল গ্রুপবা গোত্রের সঙ্গে এক ধরনের একাত্মতা আর ছিলসাম্য-সহমর্মিতা-সমবেদনাকেন্দ্রিক সাম্য। রবার্ট ডালের কথায়, আদিমকাল থেকেইশাসনব্যবস্থা সম্পর্কে সমাজের মানুষ ভেবেছেন। তাদের রয়েছে রাজনৈতিকক্ষেত্রে সমমর্যাদাসম্পন্ন অবস্থান, সামগ্রিকভাবে তারা সার্বভৌম এবং তাদেররয়েছে নিজেদের শাসন করার উপযোগী সক্ষমতার সম্পদ ও প্রতিষ্ঠান। সমাজ বৃহৎথেকে বৃহত্তর হলে এবং সামাজিক ও অর্থনৈতিক সমস্যা জটিল হয়ে উঠলেশাসনব্যবস্থায় স্তর ও পর্যায় সৃষ্টি হতে থাকে। ফলে কিছু দক্ষ ব্যক্তিরপ্রভাব স্বীকৃত হয় বটে; কিন্তু সাধারণ মানুষের চাহিদা কোনোক্রমে উপেক্ষিতহয়নি। সবাই মিলে শাসন এবং নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠায় ভূমিকা পালন করেছেন। এভাবেশাসনব্যবস্থা হিসেবে গণতন্ত্রের উত্থান ঘটে খ্রিষ্টের জন্মের ৫০০ বছর আগে।তখন গ্রিসের নগররাষ্ট্রগুলোতে একটু একটু করে এ ব্যবস্থা স্থিতিশীল হয়।গ্রিস থেকে রোমে এর বিস্তৃতি ঘটে।ইতিহাসের পাতায় চোখ রাখলে দেখি, গ্রিসের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে পদদলিত ওসব নগররাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করে বিশ্বজয়ের অভিযান শুরু করেছিলেন একজনখ্যাতনামা গ্রিক দিজ্ঞ্বিজয়ী এবং তিনি আলেকজান্ডার। শুধু গ্রিস কেন, উত্তরআফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল দখল করে তিনিউত্তর-পশ্চিম ভারত পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিলেন। অন্যদিকে রোমান ব্যবস্থাপর্যুদস্ত হয় হুন, শক ইত্যাদি বর্বর জাতির বিজয় অভিযানে। রোম দখল করে তাদেরসংস্কৃতিচর্চা ও গণতন্ত্র দেখে কোনো কোনো নেতা অট্টহাসি দিয়ে বলেছিলেন,এখন আর এসব আবর্জনার কোনো প্রয়োজন নেই। কুঠারাঘাতে রোমের বহু নাট্যশালাতারা মাটির সঙ্গে মিশিয়ে দিয়েছিলেন। এভাবে গ্রিক ও রোমানদের গণতান্ত্রিকব্যবস্থা প্রায় নিঃশেষ হয়ে আসে। কিন্তু সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা,বিশেষ করে স্বশাসনের প্রতি মানুষের যে সহজাত দুর্বলতা, তা তো চিরঞ্জীব। তারতো মৃত্যু নেই। হঠাৎ তখনকার সভ্য দুনিয়া অবলোকন করলেন, ঊষর মরু অঞ্চলেরখেজুর বীথির পাশে এক গ্রামীণ পরিবেশে ৬২২ খ্রিষ্টাব্দে ইয়াসরেব লোকালয়মদিনা নাম ধারণ করে নতুনভাবে, একেবারে নতুন আঙ্গিকে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রগঠন করে ফেলেছে; তাও ওই এলাকায় বসবাসকারী বিভিন্ন ধর্মের, বিভিন্ন গোত্রের,বিভিন্ন সম্প্রদায়ের জনসমষ্টির রাষ্ট্র গঠনের এক চুক্তির মাধ্যমে। শুধুতাই নয়, তারা একটি সুলিখিত সংবিধান রচনাও করেছেন। এ সংবিধান 'মদিনা সনদ'নামে খ্যাত। নেতৃত্বে ছিলেন মক্কায় জন্মগ্রহণকারী ইসলামের রাসুল হজরতমুহাম্মদ (সা.)। বিশ্বের সর্বত্র তখন রাজরাজড়ার শাসন। সম্রাট ওধর্মযাজক-পোপের আধিপত্য। বিশ্বময় সাহারা মরুভূমির মধ্যে মদিনা রাষ্ট্র যেনছোট্ট এক মরূদ্যান। এ রাষ্ট্রের শাসনব্যবস্থার সবচেয়ে উলেল্গখযোগ্যবৈশিষ্ট্য ছিল- শাসনকারীদের ন্যায়ানুগ কর্মকাণ্ড, তাদের স্বচ্ছ নীতিমালাএবং জনগণের কাছে জবাবদিহি। চুক্তির মাধ্যমে সৃষ্ট মদিনা রাষ্ট্রের সনদ হয়েওঠে বিশ্বে সর্বপ্রথম লিখিত সংবিধান। সাম্য, শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্ব হয় এরস্লোগান। এই প্রেক্ষাপটে প্রশ্ন উঠতেই পারে, বাংলাদেশের রাজনীতিপ্রকৃতপক্ষে কতটা আদর্শিক গণতান্ত্রিক রাজনীতি! সবসময় বলা হয়েছে, গণতন্ত্র একান্তভাবে পাশ্চাত্যের এবং পাশ্চাত্যের বিভিন্নগবেষক-সমালোচকদের সুচিন্তিত অভিমত ও বিশ্লেষণের ফলেই গণতন্ত্র সমৃদ্ধহয়েছে। এ বিবরণ সঠিক নয়, নয় পরিপূর্ণ। ২০০০ সালে প্রকাশিত 'দি গ্লোবালঅ্যাডভান্স অব ডেমোক্রেসি' গ্রন্থে আদেল সাফটি সত্যই বলেছেন, 'আলোকিত যুগেরইউরোপীয় চিন্তাবিদরা গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার উৎস যে মূল্যবোধ, তাবিশ্লেষণে সর্বপ্রথমে লেখনী ধারণ করেননি। তাদের বহু আগেই এর ব্যাখ্যাদিয়েছেন মুসলিম দার্শনিকরা। প্রকৃত প্রস্তাবে জন লক এবং রুশোর বহু আগেআলফারাবি গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার ভিত্তিরূপে স্বাধীনতা, সাম্য ও জনগণেরসম্মতি সম্পর্কে মনোজ্ঞ আলোচনা করেছেন।' দীর্ঘদিন ধরে এ প্রক্রিয়ার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া সমাজকে নতুনভাবে সুসজ্জিতকরে। এ প্রক্রিয়ার অনুধাবনে একটি দৃষ্টান্তই যথেষ্ট। ১৮৯৩ সালে সর্বপ্রথমনারীদের ভোটাধিকার দেওয়া হয় নিউজিল্যান্ডে। অস্ট্রেলিয়ায় তা স্বীকার করা হয়১৯০২ সালে, যুক্তরাষ্ট্রে ১৯২০ সালে ও ব্রিটেনে ১৯২৮ সালে। যে ফ্রান্সেশাসনব্যবস্থাকে ওলটপালট করে বিপল্গবের জন্ম হয়েছে ১৭৮৯ সালে, সেই ফ্রান্স ওবেলজিয়ামে নারীরা ভোটাধিকার লাভ করেন ১৯৪৭ সালে। ইউরোপের সবচেয়েস্থিতিশীল, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অনেক উন্নত এবং সৃজনশীলতায় অগ্রগামী রাষ্ট্রসুইজারল্যান্ডে নারীদের ভোটাধিকার দেওয়া হয় ১৯৭১ সালে অর্থাৎ বাংলাদেশেরস্বাধীনতার বছরে। এদিক থেকে বলা যায়, রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে গণতন্ত্রপ্রাচীনতম বটে; গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র কিন্তু সাম্প্রতিককালের, এক অর্থে বিশশতকের। ইতিহাসে সর্বপ্রথম এই সময়ে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের সংখ্যা সর্বাধিক। একসমীক্ষায় জানা যায়, বিশ্বের সমগ্র জনসমষ্টির ৬৫ শতাংশ এখন বাস করছেনগণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থার অধীনে। পাশ্চাত্য ও মুসলিম বিশ্ব, বিশেষ করে আরববিশ্বের মধ্যে প্রধান পার্থক্য হলো পাশ্চাত্য রেনেসাঁ ও রিফরমেশনআন্দোলনের ফলে যেভাবে এনলাইটেনমেন্ট যুগে বা আলোকিত যুগে পা ফেলে এবংবিভিন্ন বিপল্গবের পরে যেভাবে গণঅধিকার সম্পর্কে সচকিত হয়ে ওঠে, মুসলিমবিশ্বে তার ক্রিয়া-প্রতিক্রিয়া তেমন প্রভাবশালী হয়ে ওঠেনি। মধ্যযুগ অতিক্রমকরে পাশ্চাত্য আধুনিকতার সরোবরে যেভাবে অবগাহনের সুযোগ লাভ করে, মুসলিমবিশ্বে তেমন সুযোগ আসেনি। এ ছাড়া উনিশ শতকের শিল্পবিপল্গব যেভাবে ইউরোপেনতুন সমাজের পত্তন করে, আরব বিশ্বে তাও ছিল অনুপস্থিত। শিল্পবিপল্গবের ফলেইউরোপের বিভিন্ন স্থানে শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে। পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের জন্যবাণিজ্যের বহুমুখী নেটওয়ার্ক তৈরি হয় দেশে-বিদেশে। বিজ্ঞানের চর্চা শুরুহয় নতুনভাবে। নব নব প্রযুক্তি আবিস্কারের ফলে সমাজে বৈপল্গবিক পরিবর্তনেরসূচনা হয়। শ্রমিক শ্রেণি প্রভাবশালী হয়ে ওঠে। জন্মলাভ করে মধ্যবিত্তশ্রেণি। শিল্পপতি, বড় বড় ব্যবসায়ী উৎপাদকদের কাছে মাথানত করতে বাধ্য হয়।আরব বিশ্বে এ ধরনের কোনো পরিবর্তন ঘটেনি।এটি অবশ্য সত্য, তখনকার শাসনব্যবস্থাগুলোর প্রকৃতি ছিল ভিন্ন এবংআধুনিককালের প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার থেকে তা ছিল হাজার যোজন দূরের। ওই সবশাসনব্যবস্থা বিভিন্নভাবে ছিল সীমিত, অপরিণত, অনেকটা প্রাথমিক পর্যায়ের।গ্রিক ও রোমান সাম্রাজ্যের পতনের ফলে সমগ্র বিশ্বে সৃষ্টি হয় সামন্তবাদী একঅন্ধকারাচ্ছন্ন যুগের। গণতন্ত্রের চেতনা দলিত-মথিত করে সামন্ত প্রভুরাখণ্ডছিন্ন জনপদে প্রতিষ্ঠা করে তাদের ব্যক্তিগত আধিপত্য এবং সেই আধিপত্যেরনিগড়ে আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দি হয় গণতান্ত্রিক চেতনা। ইউরোপব্যাপী এ অবস্থারসৃষ্টি হয়। রাজনৈতিক ইতিহাসে এ সময়কাল মধ্যযুগ বলে পরিচিত। একদিকে ধর্মীয়উন্মাদনা, অন্যদিকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতাকে কেন্দ্র করে সামন্তপ্রভু ও আরও পরেরাজন্যবর্গের সঙ্গে পোপদের তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা, দ্বন্দ্ব ও দীর্ঘকালীনপরিসরে রাজতন্ত্রের প্রচণ্ড দাপট এবং তাদের পারস্পরিক সংঘাতের ফলেগণতন্ত্রের ধারণা সমাজ জীবন থেকে হয় নির্বাসিত। এ অবস্থা অব্যাহত থাকেদীর্ঘদিন। দীর্ঘদিনের অগণতান্ত্রিকতার ঘন অন্ধকার থেকে অবশেষে আধুনিকগণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কাঠামো এবং কার্যক্রম সুস্পষ্ট হতে থাকে আঠারো শতকেরইউরোপ ও উত্তর আমেরিকায় সংঘটিত কিছু গণভিত্তিক আন্দোলন ও বিপল্গবেরমাধ্যমে।এর দুর্দম তরঙ্গ সমগ্র ইউরোপকে আন্দোলিত করতে থাকে কয়েক শতাব্দী ধরে এবংগভীরভাবে প্রভাবিত করে ইউরোপের শিল্পকলা-সাহিত্য ও সংস্কৃতিকে। মানবতারবিজয় ছিল এর প্রধান স্লোগান। প্রত্যেকের মনে আত্মবিশ্বাসের সূত্রকে সুদৃঢ়করা ছিল এর লক্ষ্য। সীমাহীন সম্ভাবনার অধিকারী যে মানুষ, তার স্বীকৃতি ছিলএর মৌল সুর। পাশ্চাত্যে মানুষ আবেগের পরিবর্তে যুক্তির প্রাধান্য স্বীকারকরেন। ব্যক্তি-আধিপত্যের পরিবর্তে আইনের সার্বভৌমত্বে বিশ্বাসী হয়ে ওঠে।আইনে যে তাদেরই স্বার্থ প্রতিফলিত হতে হবে, তা শাসকদের মানতে বাধ্য করেন।তাদের প্রতিনিধিত্ব ছাড়া শাসক যে তাদের ওপর কোনো কর আরোপ করতে পারবেন না,তা শাসককে মানতে বাধ্য করেন। সর্বোপরি, তাদের সম্মতির ভিত্তিতে যে সরকারগঠিত হবে এবং তাদের সম্মতিসাপেক্ষে সরকার অব্যাহত থাকবে, তা সরকারকেস্বীকার করতে বাধ্য হন। এভাবে পাশ্চাত্যে গণতন্ত্রের শিকড় জনসমাজে গভীরেপ্রবেশ করতে শুরু করে। বাংলাদেশের গণতন্ত্র আরোপিত, গণতন্ত্রের প্রকৃত সংজ্ঞা-সূত্র মোতাবেকপ্রকৃত গণতন্ত্র নয়; এই বক্তব্য অমূলক নয়। আমাদের প্রেক্ষাপটে গণতন্ত্রেরচালচিত্র কেমন! স্বাধীন বাংলাদেশের বয়স প্রায় পাঁচ দশক ছুঁই ছুঁই। আমাদেরদেশের সাধারণ মানুষের আকাঙ্ক্ষায় রয়েছে গণতন্ত্র এবং এই গণতন্ত্রের জন্যতাদের ত্যাগ কম নয়। কিন্তু দুঃখজনক হলেও সত্য, আমাদের গণতন্ত্রকে এখনও আমরাপ্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে পারিনি। গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলে শাসক মহল হৈচৈকরলেও প্রকৃত অর্থে গণতন্ত্রের অবস্থা ভালো নয়। এখানে সর্বাংশে গণতান্ত্রিকঅধিকার স্বীকৃত নয়। রাজনীতির মাঠ নয় সমতল। গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক অধিকারএখনও এখানে সোনার হরিণ। গণতন্ত্র মানে তো শুধু নির্বাচন নয়। আর নির্বাচনেরনামে এখানে বিগত কয়েক বছর ধরে যা হচ্ছে, তা গণতন্ত্রের সৌন্দর্যহানিই শুধুঘটায়নি, কঠিন প্রশ্নের মুখেও ফেলে দিয়েছে। গণতন্ত্রে ঐকমত্য চাই। চাইপরমতসহিষুষ্ণতা। চাই সবার সমান অধিকার। কিন্তু এর কোনোটি এখানে অবাধ নয়।এমতাবস্থায় গণতন্ত্র ও বাংলাদেশ যেন দুই বিপরীত মেরুতে।রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সাবেক উপাচার্য, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
রাজনীতি
লাউড়ের দুর্গ এখন সংরক্ষিত পুরাকীর্তি
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৩১
সুনামগঞ্জের তাহিরপুর উপজেলার লাউড় রাজ্যের রাজধানীর দুর্গকে সংরক্ষিতপুরাকীর্তি হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে এই প্রত্নতত্ত্বস্থলটি হয়েছেসরকারি তালিকাভুক্তও। গত ২৫ সেপ্টেম্বর এই প্রাচীন ঐতিহাসিক স্থাপনাকেসরকারের সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয় সংরক্ষিত ঘোষণা করে।গত বছরের ১৪ নভেম্বর থেকে তাহিরপুর উপজেলার লাউড় রাজ্যের রাজধানীর দুর্গখননের প্রাথমিক কাজ শুরু করে সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়ের প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর।এ অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ড. আতাউর রহমানখনন কাজ শুরুর পর বলেছিলেন, 'তাহিরপুরের লাউড়ে অনেক প্রত্নতাত্ত্বিকনিদর্শন পাওয়া গেছে, যেটি কয়েক যুগকে যুক্ত করবে।'ইতিহাস পর্যালোচনায় পাওয়া যায়, প্রাচীনকাল থেকে শ্রীহট্ট (সিলেট) কয়েকটিখণ্ড রাজ্যে বিভক্ত ছিল। ত্রৈপুর রাজবংশের অধ্যুষিত স্থান ত্রিপুরা রাজ্যবলে সাধারণত কথিত হয়। এই রাজবংশের অধিকার একসময় বরবক্রের সমস্ত বাম তীরপর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। শ্রীহট্টের তিন ভাগ তিনজন পৃথক নৃপতি দ্বারা শাসিত হতো। গৌড়, লাউড় ওজয়ন্তিয়া এই তিন খণ্ডের নৃপতির অধীন ছিলেন আরও অনেক ক্ষুদ্র ভূমি মালিক।লাউড় রাজ্য ছিল সুনামগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও ময়মনসিংহ জেলার কিয়দংশ পর্যন্তবিস্তৃত। লাউড় ছিল একটি স্বাধীন রাজ্য। তাহিরপুরের সীমান্ত এলাকায় লাউড়েররাজধানী ছিল। এই রাজ্যের ধ্বংসাবশেষ হলহলিয়া গ্রামে এখনও বিদ্যমান। এইরাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন কেশব মিশ্র। তারা ছিলেন কাত্যান গোত্রীয় মিশ্র।তাদের উপাধি ছিল সিংহ। খ্রিষ্টীয় দশম অথবা একাদশ শতকে তিনি কনৌজ থেকে এখানেআসেন। দ্বাদশ শতকে এখানে বিজয় মাণিক্য নামের নৃপতি রাজত্ব করতেন। কারওকারও মতে, বঙ্গ বিজয়ের পর রাঢ় অঞ্চল মুসলমানদের হাতে চলে যাওয়ায় সেখানকারবিতাড়িত ও পরাজিত সল্ফ্ভ্রান্তজনরা প্রাণ ও মান বাঁচানোর জন্য চারদিকেছড়িয়ে পড়িয়েছিলেন। তাদেরই একজন এখানে এসে রাজত্ব গড়ে তোলেন। রাঢ় শব্দ হতেইলাউড় শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে বলে মনে করা হয়। লাউড় রাজ্যের রাজধানী লাউড়ছাড়াও জগন্নাথপুর ও বানিয়াচংয়ে আর দুটি উপরাজধানী ছিল।ঐতিহাসিক ডব্লিউ হান্টারের মতে, সম্ভবত ১৫৫৬ খ্রিষ্টাব্দে লাউড় রাজ্যস্বাধীনতা হারায় এবং মোগলরা এর নিয়ন্ত্রক হন। লেখক সৈয়দ মূর্তজা আলী তাঁররচিত 'হযরত শাহ্‌জালাল ও সিলেটের ইতিহাস' গ্রন্থে উল্লেখ করেছেন, মোগলসম্রাট আকবরের শাসনামলে (১৫৫৬-১৬০৫ খ্রি.) লাউড়ের রাজা গোবিন্দ সিংহ তাঁরজ্ঞাতি ভ্রাতা জগন্নাথপুরের রাজা বিজয় সিংহের সঙ্গে আধিপত্য প্রতিষ্ঠা নিয়েবিরোধে লিপ্ত হয়েছিলেন। এর জের ধরেই বিজয় সিংহ গুপ্ত ঘাতকের হাতে নিহত হন।তার বংশধররা এ হত্যার জন্য গোবিন্দ সিংহকে দায়ী করে তার বিরুদ্ধে মোগলসম্রাট আকবরের রাজদরবারে বিচার প্রার্থনা করেন। এ ঘটনার বিচারের জন্যসম্রাট আকবর সৈন্য পাঠিয়ে গোবিন্দ সিংহকে দিল্লিতে ডেকে নেন। বিচারেগোবিন্দ সিংহের ফাঁসির হুকুম হয়। গোবিন্দ সিংহের অন্য নাম ছিল জয় সিংহ। একইসময়ে জয় সিংহ নামের অন্য এক ব্যক্তি রাজা গোবিন্দ সিংহের সঙ্গে সম্রাটআকবরের কারাগারে আটক ছিল। ভুলবশত প্রহরীরা গোবিন্দ সিংহের পরিবর্তে ওই জয়সিংহকে ফাঁসিতে ঝোলান। গোবিন্দ সিংহের প্রাণ এভাবে রক্ষা পাওয়ায় তিনি কৌশলেসম্রাট আকবরের কাছ থেকে নানা সুযোগ গ্রহণ করেন। প্রাণভিক্ষা চান তিনি এবংইসলাম ধর্ম গ্রহণ করেন। গোবিন্দ সিংহের নাম হয় হাবিব খাঁ। সম্রাট আকবরগোবিন্দ সিংহকে তার হূতরাজ্য পুনরায় দান করেন। অবশ্য শর্ত দেওয়া হয় হাবিবখাঁ সম্রাট আকবরের বশ্যতা স্বীকার করবেন এবং সম্রাটের খাজনার পরিবর্তে ৬৮খানা কোষা নৌকা নির্মাণ করে সম্রাটকে সরবরাহ করবেন। এই নৌকাগুলো খাসিয়াদেরআগ্রাসন থেকে আত্মরক্ষার জন্য মোগল ও স্থানীয় বাহিনী কর্তৃক রণতরী হিসেবেব্যবহার করা হবে। প্রাচীন নানা গ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে হাবিব খাঁর পৌত্রছিলেন মজলিস আলম খাঁ। মজলিস আলম খাঁর পুত্র ছিলেন আনোয়ার খাঁ। তিনিখাসিয়াদের উৎপাতের কারণে সপরিবারে সুনামগঞ্জের তাহিরপুরের লাউড় ছেড়েহবিগঞ্জের বানিয়াচংয়ে চলে যান এবং সেখানে স্থায়ীভাবে বসবাস করতে শুরু করেন।এই বংশেরই উমেদ রাজা লাউড়ে একটি দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন। এই দুর্গেরধ্বংসাবশেষই লাউড়ের হাউলী, হলহলিয়া বা হাবেলী নামে পরিচিত। বর্তমানে এইদুর্গের ভগ্নাবশেষ দেখা যায়। প্রতিটি প্রকোষ্ঠের কারুকার্য দেখলে যে কেউমনে করবেন, এখানে সল্ফ্ভ্রান্ত কোনো রাজা বা নৃপতি বাস করতেন। প্রাচীন এইস্থাপনা ক্রমেই ধ্বংসের পথে ছিল।সুনামগঞ্জের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ আব্দুল আহাদ বলেন, 'হাওরাঞ্চলের প্রাচীননিদর্শন লাউড় রাজ্য ঐতিহাসিক স্থাপনার স্বীকৃতি এবং সরকারের প্রত্নসম্পদেরতালিকাভুক্ত করায় এখানকার জেলা প্রশাসক হিসেবে আমি খুশি। খনন ও গবেষণায়সাধ্যমতো সহযোগিতা করব। আমি মনে করি, এখানকার পুরাকীর্তি পর্যটন বিকাশেরসহায়ক হবে।'প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের আঞ্চলিক পরিচালক ড.আতাউর রহমান জানালেন, সুনামগঞ্জের লাউড় রাজ্যের এই ঐতিহাসিক স্থাপনারস্বীকৃতি এবং সরকারের প্রত্নসম্পদের তালিকাভুক্ত করার জন্য সবচেয়ে বেশিপ্রচেষ্টা ছিল সুনামগঞ্জের কৃতী সন্তান বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনেরচেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ সাদিকের। এখন এই প্রত্নসম্পদের কেউ কোনো ক্ষয়ক্ষতিকরতে পারবে না। ওখানে খনন ও গবেষণা চলবে। উন্মুক্ত জাদুঘর করার জন্য যা যাপ্রয়োজন, সবই করা হবে।প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক মো. হান্নান মিয়া বলেন, 'এই ঐতিহাসিকদুর্গটি সরকারের প্রত্নসম্পদের তালিকাভুক্ত হওয়ায় সুনামগঞ্জ তথা সিলেটঅঞ্চলের প্রত্নপর্যটন বিকাশের ধারা উন্মোচিত হলো।'সংস্কৃতিবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব ডক্টর মো. আবু হেনা মোস্তফা কামাল এনডিসিবলেন, 'এমন ঐতিহাসিক প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনকে সরকারের সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রণালয়ের আওতাধীন প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সংরক্ষিত পুরাকীর্তিরতালিকাভুক্তির কাজটি সম্পাদন করতে পেরে সন্তুষ্টিবোধ করছি। ওই স্থানকে ঘিরেআরও বেশি গবেষণাধর্মী কাজ করার সুযোগ তৈরি হলো এবং হাওরাঞ্চলেপ্রত্ন-পর্যটনেরও সম্ভাবনা তৈরি হলো।'বাংলাদেশ পাবলিক সার্ভিস কমিশনের চেয়ারম্যান কবি ও গবেষক ড. মোহাম্মদ সাদিকবলেন, 'সিলেটের প্রাচীন ইতিহাসের অনেকাংশই এই অঞ্চলে বিদ্যমান রয়েছে,এখানে সঠিকভাবে গবেষণা করতে পারলে এই অঞ্চলের সঠিক ইতিহাস পুনরুদ্ধার করাসম্ভব হবে, যা সিলেটের ইতিহাসে এক নতুন মাত্রা যোগ হবে। এই প্রত্নস্থলটিসরকারিভাবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর, সংস্কৃতিবিষয়কমন্ত্রণালয়সহ সংশ্নিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা পোষণ করছি। এ প্রত্নস্থলটিসরকারিভাবে তালিকাভুক্ত হওয়ায় সঠিকভাবে নিরবচ্ছিন্ন গবেষণার মাধ্যমেএখানকার প্রাচীন পটভূমি জানা যাবে এবং এই অঞ্চলে প্রত্নপ্রেমী ওপ্রত্ন-পর্যটন বিকাশ হবে।'
লাউড়ের দুর্গ এখন সংরক্ষিত পুরাকীর্তি
'এমপি লীগে' কোণঠাসা আওয়ামী লীগ
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৩২
পটিয়া পৌরসভার ১ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর আবদুল খালেক। ২০১২ সালেচট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জাতীয় পার্টির অর্থ সম্পাদক ছিলেন তিনি। সে সময় থেকে২০১৬ পর্যন্ত দলটির পটিয়া পৌরসভা কমিটির সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন।কিন্তু এখন পুরোদস্তুর আওয়ামী লীগ নেতাই নয়, দলটির মনোনীত প্রার্থী হিসেবেনির্বাচন করে কাউন্সিলর হয়েছেন। সম্প্রতি ঘোষিত পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগেরপূর্ণাঙ্গ কমিটির কার্যনির্বাহী সদস্য মনোনীত হয়েছেন আবদুল খালেক।পটিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মাহমুদুল হক। পটিয়ার সাবেকসাংসদ ও চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহজাহান জুয়েলেরঅনুসারী হিসেবে পরিচিত মাহমুদুলও এখন উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহীকমিটির অন্যতম সদস্য। জাতীয় পার্টি এবং বিএনপির অঙ্গ সংগঠন যুবদলেররাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন পটিয়া থেকে নির্বাচিত সংসদ সদস্য ও সংসদেরবর্তমান হুইপ সামশুল হক চৌধুরী। অভিযোগ রয়েছে, তার হাত ধরেই আওয়ামী লীগেআসেন কাউন্সিলর আবদুল খালেক ও মাহমুদুল। শুধু তারাই নন, এক সময় জাতীয়পার্টি ও বিএনপির রাজনীতির সঙ্গে জড়িত ছিলেন, বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালনকরেছেন- এমন অনেক নেতাই সুযোগ বুঝে সাংসদ সামশুল হকের মাধ্যমে আওয়ামী লীগে'অনুপ্রবেশ' করেছেন। এই তালিকা বেশ দীর্ঘ। দলে বিভিন্ন পদ দিয়েরাজনৈতিকভাবে প্রতিষ্ঠিতও করেছেন তাদের। দলের অনেকের অভিযোগ- এভাবে এলাকায়আওয়ামী লীগের পরিবর্তে 'এমপি লীগ' প্রতিষ্ঠিত করেছেন তিনি।জানতে চাইলে কাউন্সিলর আবদুল খালেক বলেন, 'উপজেলা আওয়ামী লীগের কমিটিতেরাখা হলেও এখন আমি রাজনীতিতে সক্রিয় নেই। জনপ্রতিনিধি হিসেবে মানুষের সেবাকরে যাচ্ছি। এখন যা কিছু করছি সব পরকালের উদ্দেশ্যে।'পটিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক নাছির উদ্দিন সমকালকেবলেন, 'পটিয়ায় প্রকৃত আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীদের জায়গা নেই। সামশুল হক তিনদফায় পটিয়া থেকে এমপি নির্বাচিত হয়েছেন। প্রথমবার নেতাকর্মীদের সঙ্গে নিয়েকাজ করলেও পরবর্তী সময়ে আগের জাতীয় পার্টি ও বিএনপি থেকে সুবিধাবাদীলোকজনকে এনে আওয়ামী লীগে ভিড়িয়েছেন। পটিয়ায় রীতিমতো এমপি লীগ প্রতিষ্ঠিতকরেছেন তিনি। এই অনুপ্রবেশকারী এমপি লীগের দাপটে দলের প্রকৃত নেতাকর্মীরাঅসহায়, কোণঠাসা।'চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন,'ক্লাব আর রাজনীতি- দুটি জায়গাতেই বিশৃঙ্খলা করছেন হুইপ সামশুল হক চৌধুরী।দলের গঠনতন্ত্র মানছেন না। এলাকায় ইচ্ছেমতো দলের বিভিন্ন কমিটি করছেন। এসবকমিটিতে রেখে দলে অনুপ্রবেশকারীদের পুনর্বাসন করছেন। তাই তার সুপারিশ করাকমিটিগুলো আমরা অনুমোদন দিচ্ছি না।' দলের আরও অনেক নেতার দেওয়া তথ্যমতে, পটিয়া উপজেলার আওতাধীন একটি পৌরসভা ও১৭টি ইউনিয়নের নেতাকর্মীদের একটি অংশ জাতীয় পার্টি ও বিএনপির রাজনীতিরসঙ্গে সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলেন। উদাহরণ দিতে গিয়ে তারা জানিয়েছেন, পটিয়াপৌরসভার ৩ নম্বর ওয়ার্ডে বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করা আবুসৈয়দ একই ওয়ার্ডে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। এই ওয়ার্ড থেকেআওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে কাউন্সিলর নির্বাচিতও হয়েছেন তিনি। একইভাবেপৌরসভা বিএনপির সহসভাপতির দায়িত্ব পালন করা ৫ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলরখোরশেদ গনি এখন পৌর আওয়ামী লীগের কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য। ৬ নম্বরওয়ার্ডের কাউন্সিলর শফিউল আলম ১৯৯৬-০৭ সাল পর্যন্ত জাপার ছাত্র সংগঠনদক্ষিণ জেলা ছাত্র সমাজের সহসভাপতি ছিলেন। সম্প্রতি পৌর বিএনপির পূর্ণাঙ্গযে কমিটি গঠন করা হয়েছে তাতে সদস্য হিসেবে নাম রয়েছে তার। ৮নং ওয়ার্ডেরকাউন্সিলর আবদুল মান্নান ২০১৬ সালে পটিয়া পৌর জাপার যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন।এখন পৌর আওয়ামী লীগের পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্য তিনি। পৌরসভার ২ নম্বরওয়ার্ডের কাউন্সিলর রূপক কুমার সেনও এখন আওয়ামী লীগ করলেও এক সময় জাপাররাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন। বরলিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদকেরদায়িত্ব পালন করছেন ইউনুস তালুকদার। এর আগে তিনি যুবদলের পৌর কমিটির সাধারণসম্পাদক ছিলেন। এভাবে আরও অনেক নাম এসেছে যারা এখন আওয়ামী লীগের রাজনীতিরসঙ্গে জড়িত থাকলেও বিভিন্ন সময় তারা বিএনপি ও জাপার রাজনীতি করতেন।পটিয়া উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক খোরশেদ আলম জানিয়েছেন, খোরশেদ গনি ওআবু সৈয়দ বিএনপির যেসব কমিটিতে ছিলেন সেই কমিটি এখনও বহাল রয়েছে। তাদের দলথেকে বহিস্কার করা হয়নি। তারা দলের রাজনীতি থেকে লিখিতভাবে ইস্তফা নেননি।তারপরও কীভাবে তারা আওয়ামী লীগের রাজনীতিতে জড়িত হলেন এবং বিভিন্ন পদেদায়িত্ব পালন করছেন তা বোধগম্য নয়।এসব বিষয়ে জানতে যোগাযোগ করা হলে সামশুল হক চৌধুরী সমকালকে বলেন, 'আমাকেঅনেকেই বিএনপি ও জাপা নেতা বানিয়েছেন। যেকোনো সময় হয়তো তারা আমাকে জামায়াতনেতাও বানাবেন। একটি পক্ষ আমাকে অপদস্থ করতে বিভিন্ন ধরনের মনগড়া, মিথ্যা ওভিত্তিহীন কথাবার্তা বলছে। আমি কারও বিরুদ্ধে বলব না। আমি শুধু আল্লাহরকাছে বিচার দিচ্ছি। আর প্রধানমন্ত্রীর কাছেও বিচার চাইব।' দেশে চলমান মাদক ও জুয়াবিরোধী সাঁড়াশি অভিযানে গত ২১ সেপ্টেম্বর রাতেচট্টগ্রাম নগরীর হালিশহরে আবাহনী ক্লাবে অভিযান চালায় র‌্যাব। এ ক্লাবটিছাড়াও আরও অন্তত এক ডজন ক্লাবে অভিযান চালিয়েছে র‌্যাব ও পুলিশ। প্রায় সবক্লাবেই জুয়ার আলামত পাওয়া যায়। আবাহনী ক্লাবের মহাসচিব হচ্ছেন হুইপ সামশুলহক চৌধুরী। ক্লাবে চালানো এই অভিযান নিয়ে বিরূপ মন্তব্য করলে তীব্রসমালোচনা মুখে পড়েন তিনি।
আওয়ামী লীগ
পুলিশের অপরাধ গোপনের চেষ্টা হলে কঠোর ব্যবস্থা
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৩৩
কোনো পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে নীতিবহির্ভূত কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়াগেলে দ্রুত তার ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি বিষয়টিজানাতে হবে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে। এ ধরনের ঘটনা গোপন করার চেষ্টা হলেসংশ্নিষ্ট ইউনিট প্রধানের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সম্প্রতি পুলিশসদর দপ্তর থেকে সারাদেশে পাঠানো এক চিঠিতে এমনই কঠোর নির্দেশনা দেওয়াহয়েছে। এতে অবৈধ আর্থিক লেনদেন বা ঘুষ-দুর্নীতি ঠেকাতে 'শূন্য সহনশীলতা'নীতি মেনে সংশ্নিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথাও বলা হয়েছে।পুলিশ সদর দপ্তরের গণমাধ্যম ও জনসংযোগ শাখার সহকারী মহাপরিদর্শক (এআইজি)সোহেল রানার কাছে এ ব্যাপারে জানতে চাওয়া হলে তিনি চিঠি পাঠানোর বিষয়টিনিশ্চিত করেন। তবে তিনি এ সম্পর্কে আর কিছু বলতে রাজি হননি। সংশ্নিষ্টরা জানান, সাম্প্রতিক বিভিন্ন ঘটনায় কোনো কোনো পুলিশ সদস্যেরবিরুদ্ধে নৈতিক স্খলন বা অপরাধমূলক কাজে সম্পৃক্ততার অভিযোগ পাওয়া যাচ্ছে।আলোচিত ক্যাসিনোকাণ্ডেও পুলিশের দিকে অভিযোগের আঙুল উঠেছে। এসব ঘটনায়দু-একজন পুলিশ সদস্যের জন্য পুরো বাহিনীর ভাবমূর্তি প্রশ্নবিদ্ধ হয়। একারণে সারাদেশের পুলিশ ইউনিটগুলোকে কিছু নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ফেসবুকেরমতো সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারেও এসেছে বিধিনিষেধ। প্রত্যেক পুলিশসদস্য যেন যথাযথভাবে পোশাক পরেন এবং কর্মক্ষেত্রে কোনো দুর্ব্যবহার বাঅসদাচরণ না করেন সে ব্যাপারেও সতর্ক করা হয়েছে। অন্যথায় সংশ্নিষ্ট পুলিশকর্মকর্তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানানো হয়েছে। পুলিশ সদর দপ্তরথেকে পাঠানো ওই চিঠিতে বলা হয়েছে, অপরাধ চিহ্নিত ও দমন করাসহ জনসাধারণেরজানমালের নিরাপত্তায় পুলিশের প্রত্যেক সদস্যকে নৈতিকতা, সততা ও নিষ্ঠারসঙ্গে কাজ করতে হয়। প্রত্যেক সদস্যই আইনের মাধ্যমে নিয়ন্ত্রিত। পুলিশ আইন,পিআরবি এবং সরকারি কর্মচারী (শৃঙ্খলা ও আপিল) বিধিমালা সম্পর্কে সব সদস্যকেপ্রতি মাসে অবহিত করতে হবে। প্রয়োজনে রোলকলে, কল্যাণ সভায় বা অন্যান্যসভাতেও এসব আইনের গুরুত্বপূর্ণ ধারাগুলো উদ্ৃব্দত করে নৈতিক স্খলনের বিষয়েসচেতন করতে হবে। সম্প্রতি হুইপ সামশুল হক চৌধুরীর বিরুদ্ধে চট্টগ্রাম আবাহনী ক্লাবের জুয়ারআসর থেকে ১৮০ কোটি টাকা 'আয়' করার অভিযোগ তুলে ফেসবুকে স্ট্যাটাস দেন পুলিশপরিদর্শক মাহমুদ সাইফুল আমিন। এ ঘটনায় ব্যাপক সমালোচনা শুরু হলে তাকেসাময়িক বরখাস্ত করা হয়। পুলিশ সদর দপ্তরের চিঠিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমব্যবহার নিয়েও একাধিক নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। চিঠিতে বলা হয়, ফেসবুক বাঅন্য কোনো সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে রাষ্ট্র, সরকার বা কোনোবাহিনী/বিভাগ/সংস্থা সম্পর্কে বিরূপ মন্তব্য করা থেকে বিরত থাকতে হবে। একইমাধ্যমে ধর্মীয় অনুভূতিকে কাজে লাগিয়ে কোনো পোস্ট দিয়ে সম্প্রীতি নষ্ট বাসামাজিক অসন্তোষ সৃষ্টি করা যাবে না। কোনো ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানকে আঘাত বাসামাজিক বিতর্ক তৈরি করে এমন বিষয় পোস্ট বা শেয়ার করা যাবে না। নারী-শিশুনির্যাতন বা অন্য কোনো স্পর্শকাতর ঘটনা শেয়ার বা পোস্ট করা থেকে বিরত থাকতেহবে। দায়িত্ব পালনরত অবস্থায় প্রয়োজন ছাড়া মোবাইল ফোন ব্যবহার (ইন্টারনেটব্রাউজিং/চ্যাটিং/গান বা ওয়াজ শোনা) না করতেও নির্দেশনায় বলা হয়েছে।এদিকে মাঠপর্যায়ে পুলিশের বিরুদ্ধে সেবাপ্রত্যাশীকে হয়রানির প্রচুর অভিযোগপাওয়া যায়। সে ব্যাপারেও নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে সদর দপ্তর থেকে। বলা হয়েছে,আসামি গ্রেফতার, পরিবহন ও জিজ্ঞাসাবাদের সময় ফৌজদারি কার্যবিধি এবং পুলিশপ্রবিধান অনুসরণ করতে হবে। পুলিশের মাধ্যমে যেন সাধারণ মানুষ হয়রানির শিকারনা হয় তা নিশ্চিত করতে হবে। সব সময় ভালো ব্যবহার করতে হবে সেবাপ্রত্যাশীরসঙ্গে। এছাড়া যেসব পুলিশ সদস্যের পরিবার তার কর্মস্থল থেকে দূরে থাকে, তাদের ছুটিদেওয়ার ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিতে ও নজরদারি করতে বলা হয়েছে। পুলিশ লাইন্স,থানা ও ফাঁড়িতে পুলিশ সদস্যদের জন্য বিনোদনের ব্যবস্থা, বিশেষ করে ফুটবল,ভলিবল, ব্যাডমিন্টন, ক্যারম, দাবা, টেবিল টেনিস, ক্রিকেট ইত্যাদি খেলাধুলারআয়োজন করতেও তাগিদ দেওয়া হয়েছে।সম্প্রতি রাজধানীর পল্টন থানার ওসির বিরুদ্ধে এক তরুণীকে বিয়ের কথা বলে দেড়বছর ধরে অনৈতিক সম্পর্ক চালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ পাওয়া যায়। এর আগে রাজধানীরআরেক থানার ওসির বিরুদ্ধেও ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছিল। পুলিশ সদর দপ্তরেরচিঠিতে বলা হয়েছে, বাহিনীর কোনো সদস্যের নৈতিক স্খলন ঘটলে বিষয়টি সর্বাধিকগুরুত্ব ও পেশাদারিত্বের সঙ্গে আমলে নিয়ে অনুসন্ধান করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থানিতে হবে।
পুলিশের অপরাধ
এত পেঁয়াজ যায় কই
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৩৪
পেঁয়াজের দাম রাতারাতি অস্বাভাবিক বাড়াতে কারসাজির অভিযোগ উঠেছেব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে। গত রোববার বিকেলে ভারতের পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের খবরটেলিফোনে সবাইকে জানিয়ে দেন ব্যবসায়ীরা। এরপর চট্টগ্রামের পাইকারি মোকামখাতুনগঞ্জে বিকেল থেকে পেঁয়াজ বিক্রি বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল সোমবার সকাল থেকেগুদামজাত করা সেই পেঁয়াজ পাইকারি কেজিপ্রতি ২৫ থেকে ৩০ টাকা বাড়তি দামেবিক্রি করা হয়। খাতুনগঞ্জে ভারতীয় পেঁয়াজের চেয়ে বেশি ছিল মিয়ানমারেরপেঁয়াজ। প্রতিকেজি ৪৩ টাকা দরে কেনা এসব পেঁয়াজ রোববার সকালে বিক্রি হয়েছিল৫০ থেকে ৫৫ টাকায়। গতকাল পাইকারি মোকামেই এগুলো বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা।ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে ৯০ টাকায়। খুচরা বাজারে এ পেঁয়াজের দাম হয়েছে১০৫ থেকে ১১০ টাকা। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত এক মাসে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়েতিন হাজার ৫৭৩ টন পেঁয়াজ এসেছে। আবার চট্টগ্রাম বন্দরে ৪১১ টন পেঁয়াজ আছেতিনটি জাহাজে। রোববার পর্যন্ত ভারত থেকেও এসেছে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ। তারপরওদাম বাড়তে থাকায় প্রশ্ন উঠেছে এত পেঁয়াজ যায় কোথায়। টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়েপেঁয়াজ আমদানি হতো সীমিত পর্যায়ে। তবে ভারত পেঁয়াজের দাম ৩০০ ডলার থেকেবাড়িয়ে টনপ্রতি ৮৫০ ডলার করার ঘোষণা দেওয়ায় গত ১৫ সেপ্টেম্বর থেকে টেকনাফদিয়ে আমদানি বাড়ান ব্যবসায়ীরা। গত আগস্টে টেকনাফ দিয়ে ৮৪ দশমিক ১৩২ টনপেঁয়াজ আমদানি হলেও সেপ্টেম্বরে এসেছে তিন হাজার ৫৭৩ দশমিক ১৪১ টন। ১৫ কোটি৫৫ লাখ ২৪ হাজার ৩৫৭ টাকায় এসব পেঁয়াজ আমদানি করেন ১০ থেকে ১৫ জনব্যবসায়ী। প্রতিকেজি পেঁয়াজ আনতে তাদের গড়ে খরচ হয়েছে মাত্র ৪৩ টাকা।পরিবহন ও শ্রমিক খরচ পাঁচ টাকা করে ধরলেও পাইকারি মোকামে নিতে এসব পেঁয়াজেরদাম পড়ে ৪৮ টাকা। কেজিপ্রতি পাঁচ টাকা লাভ ধরলেও এসব পেঁয়াজ পাইকারিমোকামে বিক্রি হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ৫৩ টাকায়। তবে গতকাল চট্টগ্রামেরখাতুনগঞ্জে মিয়ানমারের পেঁয়াজই প্রতি কেজি বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা। অনুসন্ধানে জানা যায়, ১৩ টন পেঁয়াজ বোঝাই একটি ট্রাক টেকনাফ স্থলবন্দর থেকেখাতুনগঞ্জে আসতে ভাড়া নিচ্ছে সর্বোচ্চ ১৭ হাজার টাকা। এ হিসাবে প্রতি কেজিপেঁয়াজ পরিবহনে খরচ হয় ১ টাকা ৩০ পয়সা। ট্রলার থেকে পণ্য ট্রাকে উঠানো এবংট্রাক থেকে নামানো বাবদ কেজিতে আরও ১ টাকা লেবার চার্জ যুক্ত করলে খরচদাঁড়ায় মোট দুই টাকা ৩০ পয়সা। পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য হওয়ায় প্রতি কেজিতে ১টাকা ডেমারেজ চার্জ যুক্ত করলেও এ খরচ হয় সর্বোচ্চ তিন টাকা ৩০ পয়সা। এসবখরচ হিসাবে এনে প্রতি কেজিতে আমদানিকারক ৫ টাকা লাভ করলেও পাইকারি মোকামেপেঁয়াজ বিক্রি হওয়ার কথা সর্বোচ্চ ৫৩ টাকা। কারণ খাতুনগঞ্জে যারা পেঁয়াজেরব্যবসা করছেন তারা কেজিতে ৫০ পয়সা কমিশন নেন। কিন্তু আমদানিকারক পাইকারিতে৭০ থেকে ৭৫ টাকায় পেঁয়াজ বিক্রি করায় তা খুচরা বাজারে গিয়ে বিক্রি হচ্ছে১০৫ থেকে ১১০ টাকা। হাতবদলে এভাবে দাম দ্বিগুণ হয়ে যাওয়ার পেছনে মিয়ানমারথেকে পেঁয়াজ আনা ব্যবসায়ীদের দায়ী করছেন খাতুনগঞ্জের কমিশন এজেন্টরা।খাতুনগঞ্জের হামিদ উল্লাহ মিয়া মার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদকমোহাম্মদ ইদ্রিস মিয়া সমকালকে বলেন, পাইকারি এ মোকামে ৫০ পয়সা কমিশনেপেঁয়াজ বিক্রি করি আমরা। আমদানিকারক যদি বেশি দামে পণ্য বিক্রি করে আমাদেরকী করার আছে। কেন কম দামে কেনা পেঁয়াজ বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে, সেটি মনিটরকরার কথা সরকারের। গোয়েন্দা সংস্থা খতিয়ে দেখুক, কারা কারসাজি করছে।টেলিফোন করে পেঁয়াজ বিক্রি একদিন বন্ধ রেখে গতকাল বাড়তি দামে বিক্রি করারঅভিযোগ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আমরা কাউকে পণ্য বিক্রি বন্ধ করতে ফোন করিনি।অনেকের কাছে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ নেই। কারণ বাংলাদেশে পেঁয়াজের বড় বাজারনিয়ন্ত্রণ করে ভারত। এ কারণে আতঙ্ক থেকে হয়তো কেউ কেউ বিক্রি বন্ধ রেখেছিল।তিনি জানান, গতকাল এমন কোনো পরিবেশ ছিল না খাতুনগঞ্জে। দাম বাড়তি হলেওবেচাকেনা ছিল। তবে স্বাভাবিকের তুলনায় কম ছিল ক্রেতা। খাতুনগঞ্জ ট্রেড অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক ছৈয়দছগীর আহমদ জানান, ভারতের মহারাষ্ট্রে পেঁয়াজের ফলন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্তহলে তাদের অভ্যন্তরীণ বাজারে দর বেশ বাড়ে। ফলে ভারত সরকার পেঁয়াজের নূ্যনতমরফতানি মূল্য টনপ্রতি ৮৫০ ডলার নির্ধারণ করে। আগে যেখানে ২৫০ থেকে ৩০০ডলারে আমদানি করা যেত, তা ৮৫০ ডলার হওয়ায় ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে দেশে পেঁয়াজেরদাম বাড়তে থাকে। রোববার বিকেলে পেঁয়াজ রফতানি একেবারে নিষিদ্ধ করে দেয়ভারত। এটির সুযোগ নিতে পারে কিছু অসাধু ব্যবসায়ী। অনুসন্ধানে জানা যায়, গত ১৫ দিনে টেকনাফ স্থলবন্দর দিয়ে এককভাবে সবচেয়েবেশি পেঁয়াজ এনেছেন এমএইচ ট্রেডিংয়ের মালিক মোহাম্মদ হাশেম। টেকনাফের এব্যবসায়ী একাই প্রায় ৮০০ টন পেঁয়াজ এনেছেন বলে সমকালকে জানান তিনি। সর্বোচ্চ পেঁয়াজ আমদানির কথা জানালেও অতিরিক্ত মুনাফা করার অভিযোগ অস্বীকারকরে মোহাম্মদ হাশেম বলেন, দেশে আনা পেঁয়াজ নূ্যনতম লাভে বিক্রি করেছিআমরা। পেঁয়াজ পচনশীল পণ্য হওয়ায় এখানে আমাদের লোকসানও অনেক বেশি। তারপরওকেন পেঁয়াজের দাম এতটা বেড়েছে, তা খতিয়ে দেখুক সরকার। পাইকারি ও খুচরাব্যবসায়ীরাই পেঁয়াজের দাম নিয়ে কারসাজি করছে বলে তার অভিযোগ। টেকনাফ দিয়েপেঁয়াজ আমদানি করা অন্য বড় ব্যবসায়ীরা হচ্ছেন মো. জব্বার, মো. সেলিম, মো.সাদ্দাম ও মো. শওকত আলী। গত ১৫ দিনে আমদানি করা পেঁয়াজের বেশিরভাগই তাদের। চট্টগ্রামে বন্দরে তিন জাহাজে আছে ৪১১ টন পেঁয়াজ :বন্দরের টারমিনালম্যানেজার কুদরত-ই-খুদা মিল্লাত জানান, চীন, মিসর ও তুরস্ক থেকে ৪১১ টনপেঁয়াজ নিয়ে বন্দরে এসেছে তিনটি জাহাজ। এসব জাহাজে মোট ১৪টি কনটেইনারেপেঁয়াজ রয়েছে। বরিশাল থেকে সুমন চৌধুরী জানান, বরিশালে খুচরা বাজারে পেঁয়াজের কেজি ১০০টাকার ওপরে বিক্রি হচ্ছে। গত রোববার রাতে ভারত থেকে পেঁয়াজ রফতানি বন্ধেরখবর প্রচার হওয়ার পর ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে প্রতি কেজিতে কমপক্ষে ৩০ টাকা দামবেড়েছে। এ পরিস্থিতির মধ্যেই গতকাল নগরীতে পেঁয়াজ ছাড়াই খোলা বাজারে পণ্যবিক্রি কার্যক্রম উদ্বোধন করেছে বাংলাদেশ ট্রেডিং করপোরেশন অব বাংলাদেশ(টিসিবি)। এদিকে গতকাল নগরীতে টিসিবির চিনি, মসুর ডাল ও সয়াবিন তেল বিক্রিকার্যক্রম উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক এসএম অজিয়র রহমান। টিসিবি সারাদেশে ৪৫টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রির ঘোষণা দিলেও বরিশালে পণ্য তালিকায় এর নামনেই। টিসিবির বরিশাল বিভাগীয় প্রধান আনিছুর রহমান জানান, কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকেই তাদের পেঁয়াজ সরবরাহ করা হয়নি। সিলেট ব্যুরো জানায়, সিলেটের বাজারে একরাতেই দ্বিগুণ দাম বেড়েছে পেঁয়াজের।রোববার বাজারে যে পেঁয়াজ ৬০-৬৫ টাকা কেজি দরে বিক্রি হয় সে পেঁয়াজ গতকাল১১০-১২০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গতকাল নগরীর বিভিন্ন বাজার ঘুরে বিষয়টিনিশ্চিত হওয়া গেছে। আখালিয়া বিজিবি হেড কোয়ার্টার গেটের বাসিন্দা ট্রাভেলসব্যবসায়ী মকবুল হোসেন তালুকদার বলেন, হঠাৎ দাম বাড়ায় পেঁয়াজ কিনিনি।হিলি (দিনাজপুর) সংবাদদাতা জানান, হিলি স্থলবন্দরের পাইকারি বাজারে মাত্রকয়েক ঘণ্টার ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বিক্রি হচ্ছে ৮০-৯০ টাকা। যা গতশনিবার ও রোববার দুপুর পর্যন্ত ছিল ৪৭-৫০ টাকার মধ্যে। গতকাল দুপুর ২টায় এসংবাদ লেখা পর্যন্ত এ বন্দর দিয়ে ভারত থেকে শুধু পাথর আমদানি হয়েছে।পেঁয়াজের কোনো চালান দেশে আসেনি।বন্দরের আমদানিকারক মোবারক হোসেন জানান, বাংলাদেশে প্রবেশের অপেক্ষায়৪০-৫০টি পেঁয়াজ বোঝাই ট্রাক সীমান্তের ওপারে আটকে আছে। অনেকের নতুন এলসিকরা আছে, সেগুলো আগামী ২ অক্টোবরের মধ্যে ঢোকার কথা।
এত পেঁয়াজ যায় কই
রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দিতে পুলিশ সুপারের সুপারিশ!
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৩৭
কক্সবাজারে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দিতে সুপারিশ করেছেন খোদ পুলিশ সুপার।একাধিক রোহিঙ্গার পাসপোর্ট ফরমে পাওয়া গেছে পুলিশ সুপারের সুপারিশ সংবলিতস্বাক্ষর। রোহিঙ্গাদের জাতীয় পরিচয়পত্র (এনআইডি) ও পাসপোর্ট দেওয়ার ঘটনাউদ্ঘাটন করতে গিয়ে মিলছে পিলে চমকানো আরও তথ্য। পুলিশ ভেরিফিকেশন ওনির্বাচন কমিশনকে ম্যানেজ করে 'স্মার্টকার্ড' পর্যন্ত বাগিয়ে নিয়েছে তারা।এতদিন বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়া রোহিঙ্গা ডাকাত নুর মোহাম্মদের স্মার্টকার্ডআলোচনায় থাকলেও সমকালের অনুসন্ধান বলছে, এমন স্মার্টকার্ড রোহিঙ্গারাপেয়েছে আরও। রোহিঙ্গাদের এমন কয়েকটি স্মার্টকার্ড এসেছে সমকালের হাতে। আছেরোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দিতে পুলিশ সুপারের সুপারিশ সংবলিত একাধিক নথিও। আবাররোহিঙ্গা পরিবারকে এনআইডি দিতে কিছু জনপ্রতিনিধিরও সুপারিশ সংবলিত নথি আছেসমকালের কাছে। এসব নথি পর্যালোচনা করে বোঝা যাচ্ছে, রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট ওএনআইডি দেওয়ার নেপথ্যে আছে অনেক রাঘববোয়াল। রোহিঙ্গাদের এনআইডি ও পাসপোর্ট কেলেঙ্কারিতে জড়িতদের শনাক্ত করতে কাজ করছেদুর্নীতি দমন কমিশন। দুদক চট্টগ্রামের বিভাগীয় পরিচালক মাহমুদ হাসান তারকার্যালয়ে বসে সমকালকে বলেন, 'রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট ও এনআইডি দেওয়ার পেছনেকাজ করেছে একটি সংঘবদ্ধ চক্র। কারা কোন প্রক্রিয়ায় এ চক্রে যুক্ত হয়েছে, তানিয়ে কাজ করছে দুদক।' এ চক্রে কারা আছে তা বিস্তারিত জানাতে অপারগতাপ্রকাশ করেন তিনি। এদিকে রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দিতে সুপারিশসহপ্রতিস্বাক্ষর করা কক্সবাজারের তৎকালীন পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেনবলেন, '৯২ সালের দিকে যেসব রোহিঙ্গা এসেছে, তাদের অনেকে জায়গা কিনে স্থায়ীবাসিন্দা হিসেবে রয়েছে কক্সবাজারে। জনপ্রতিনিধিরাও এদের স্থায়ী বাসিন্দাহিসেবে জন্মনিবন্ধন সনদ ও জাতীয়তা সনদ দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন দিয়েছেএনআইডি। এ কারণে পুলিশ ভেরিফিকেশনে কোথাও কোথাও বিভ্রান্তি তৈরি হয়েছে।জ্ঞাতসারে আমি কোনো রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দিতে সুপারিশ করিনি। তৃণমূলে যেকর্মকর্তারা সরেজমিন তদন্ত করেছেন তাদের রিপোর্টের ভিত্তিতে আমিপ্রতিস্বাক্ষর করেছি।' কক্সবাজার যেহেতু স্পর্শকাতর এলাকা সেহেতুযাচাই-বাছাই ছাড়া এভাবে সুপারিশ করা কতটা যৌক্তিক ছিল- এমন প্রশ্নের জবাবেতিনি বলেন, 'পুনরায় যাচাই-বাছাই করার পর্যাপ্ত জনবল আমার ছিল না।ভেরিফিকেশনের দায়িত্বে থাকা কর্মকর্তার মতামতের ওপর তাই আস্থা রাখতে হয়েছেআমাকে।' তবে কক্সবাজারের বর্তমান পুলিশ সুপার এ বি এম মাসুদ হোসেন বলেন,'রোহিঙ্গাদের এনআইডি ও পাসপোর্ট পাওয়া নিয়ে সারাদেশে তোলপাড় চলছে। তাই আমরাঅধিকতর সতর্কতা অবলম্বন করছি। কোনো রোহিঙ্গা যাতে পাসপোর্ট না পায়, সেজন্য ভালো করে যাচাই-বাছাই করছি নথিপত্র। জায়গা কেনার নথি দেখালেও পুনরায়সরেজমিন গিয়ে তদন্ত করছি আমরা। একদিনে অনেকগুলো পাসপোর্টের আবেদন জমা হয়বলে পুনঃতদন্ত করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে আমাদের।'পাসপোর্ট ও এনআইডি পেতে কোথায় কত ধাপ :পাসপোর্টে পুলিশ ভেরিফিকেশনের নিয়মপ্রসঙ্গে চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার আবদুল ওয়ারিশ জানান,পাসপোর্ট পেতে হলে নিয়ম অনুযায়ী একটি ফরম পূরণ করতে হয় আবেদনকারীকে। এইফরমে আবেদনকারীর স্থায়ী ও বর্তমান ঠিকানাসহ বিভিন্ন তথ্য উল্লেখ করতে হয়।দিতে হয় জরুরি প্রয়োজনে যোগাযোগ করতে স্থানীয় কোনো ব্যক্তির পরিচয় ওঠিকানা। পাসপোর্টের ফরমে আবেদনকারীর দেওয়া তথ্য সরেজমিন গিয়ে যাচাই-বাছাইকরে প্রতিবেদন দিতে হয় পুলিশের বিশেষ শাখাকে। সাধারণত এসআই কিংবা এএসআইপর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা ঠিকানা যাচাই-বাছাই করে প্রথমে একটি প্রতিবেদনদেন। এই প্রতিবেদন পুনরায় যাচাই-বাছাই করেন পুলিশের বিশেষ শাখার পরিদর্শকপদমর্যাদার আরেকজন কর্মকর্তা। এ দু'জনের দেওয়া তথ্য পুনরায় যাচাই-বাছাই করেপ্রতিস্বাক্ষর করার কথা বিশেষ শাখার অতিরিক্ত উপ-পুলিশ কমিশনার বাসমমর্যাদার কোনো কর্মকর্তার। একইভাবে জাতীয় পরিচয়পত্র পেতেও পেরুতে হয় কিছুসুনির্দিষ্ট ধাপ। এনআইডি পেতে জমা দিতে হয় জন্মনিবন্ধন সনদ। আরজন্মনিবন্ধন পেতে পরিবারের অন্যদের এনআইডি, জায়গার খতিয়ান কিংবা বিদ্যুৎবিলের কপি জমা দিতে হয়। প্রয়োজনে দিতে হয় শিক্ষা সনদের কপি। এতসব ধাপ থাকারপরও পুলিশ ও নির্বাচন কমিশনের কর্মকর্তাদের ম্যানেজ করে রোহিঙ্গারা পেয়েগেছে এনআইডি। কেউ কেউ আরেক ধাপ এগিয়ে পেয়ে গেছে স্মার্টকার্ড। রোহিঙ্গাকে পাসপোর্ট দিতে পুলিশ সুপারের স্বাক্ষর :হাসিনা আকতার নামের একরোহিঙ্গা পাসপোর্ট পেতে আবেদন করেন ২০১৭ সালের ৪ মার্চ। আবেদন ফরমে তিনিস্বামীর নাম উল্লেখ করেন নুরুজ জমান। মাতার নাম নাজমা খাতুন। বর্তমান ওস্থায়ী ঠিকানার ঘরে লেখেন- গ্রাম :তোতকখালী, রাস্তা :৩, ডাকঘর :পিএমখালী,কক্সবাজার সদর, কক্সবাজার, চট্টগ্রাম। উল্লেখিত ঠিকানায় এই নামে কেউ নাথাকলেও কক্সবাজার বিশেষ শাখার পুলিশ পরিদর্শক মিজানুর রহমান, জেলা গোয়েন্দাকর্মকর্তা-১ কাজী মো. দিদারুল আলম ও পুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেনতাকে পাসপোর্ট দেওয়ার সুপারিশ করেন। পুলিশ সুপারের প্রতিস্বাক্ষরের ওপরলেখা আছে- 'চরিত্র ও প্রাক-পরিচয় যাচাই করিয়া সব সঠিক পাওয়া গেল। সংশ্নিষ্টথানা ও অত্র জেলা বিশেষ শাখায় প্রার্থীর বিরুদ্ধে বিরূপ কোনো তথ্য নাই।'অথচ দুদকের এনফোর্সমেন্ট টিম তদন্ত করে নিশ্চিত হয়েছে, হাসিনা আকতারেরউল্লেখিত সব তথ্যই ভুয়া। আবার রোহিঙ্গা হওয়ার পরও হাসিনা আকতার ও তারস্বামী নুরুজ জমান পেয়েছে এনআইডি কার্ড। হাসিনার এনআইডি কার্ডের নম্বর-১৯৯৩২২১২৪৪৭৪১৫৪৩২। আর তার স্বামীর এনআইডি নম্বর- ২২১২৪৪৭১১৪৬৪৪। একইভাবেভুয়া ঠিকানা দিয়ে এনআইডি নিয়েছে আরেক রোহিঙ্গা সাদিয়া বেগম(নম্বর-১৯৯২২২১২৪৪০০০০০২৪৮) ও তার স্বামী ওমর ফারুক (নম্বর-২২১২৪৪৭৪১৫৭১২)।সাদিয়া বেগমকে পাসপোর্ট দিতেও একইভাবে সুপারিশ করেছেন কক্সবাজারের তৎকালীনপুলিশ সুপার ড. একেএম ইকবাল হোসেন। ২০১৭ সালের ২০ মার্চ পাসপোর্টের জন্যআবেদন করেন রোহিঙ্গা নারী সাদিয়া। আবেদন ফরমে তিনি ঠিকানা উল্লেখ করেছিলেন-ফারুকের বাড়ি, দক্ষিণ হাজীপাড়া গ্রাম, ডাকঘর :ঝিলংজা, কক্সবাজার,চট্টগ্রাম। এ ঠিকানা ভুয়া হলেও 'সব ঠিক আছে' বলে পাসপোর্ট দিতে সুপারিশকরেন তৎকালীন পুলিশ সুপার। ২০১৭ সালে কক্সবাজারে পুলিশ সুপারের দায়িত্বেথাকা ড. একেএম ইকবাল হোসেন রোহিঙ্গাদের পাসপোর্ট দিতে এমন বেশ কয়েকটি ফরমেসুপারিশসহ প্রতিস্বাক্ষর করেছেন। ২০১৭ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১৮ সালেরসেপ্টেম্বর পর্যন্ত কক্সবাজারে পুলিশ সুপার ছিলেন তিনি। ড. ইকবাল এখনট্যুরিস্ট পুলিশে আছেন পুলিশ সুপারের পদে। তার স্থলাভিষিক্ত হয়ে কক্সবাজারেএখন পুলিশ সুপারের দায়িত্ব পালন করছেন এ বি এম মাসুদ হোসেন।রোহিঙ্গাদের হাতে হাতে স্মার্টকার্ড :সম্প্রতি বন্দুকযুদ্ধে নিহত হওয়ারোহিঙ্গা ডাকাত নুর মোহাম্মদের স্মার্টকার্ড এতদিন আলোচনায় থাকলেও এখন দেখাযাচ্ছে এমন স্মার্টকার্ডের মালিক হয়েছেন অনেক রোহিঙ্গা। এদেরই একজন হাফেজআহম্মদ। নাবালক মিয়ার বাড়ি, আগ্রাবাদ, ডবলমুরিং, চট্টগ্রাম- এই ঠিকানাব্যবহার করে স্মার্টকার্ড পেয়েছেন তিনি। আবার পাসপোর্টের আবেদনে তিনিঠিকানা লিখেছেন গ্রাম :পূর্ব ধেছুয়া পালং, ওয়ার্ড নং :৪, রাবেতা, রামু,কক্সবাজার। চলতি বছরের ১৭ এপ্রিল তিনি এ আবেদন করেন। এতসব ঠিকানা ব্যবহারেরপরও রোহিঙ্গা হাফেজ আহম্মদের হাতে গেছে নির্বাচন কমিশনের স্মার্টকার্ড(নম্বর-১৪৫৯৮০৯১৫৬)। আশ্চর্যজনক হলেও সত্য, হাফেজের স্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিনওপেয়েছে স্মার্টকার্ড (নম্বর-৩২৫৮৮৩৭০১৬)।রোহিঙ্গা হওয়ার পরও স্মার্টকার্ডধারী আরেক সৌভাগ্যবতী হচ্ছেন রাশেদা বেগম।নির্বাচন কমিশনকে ম্যানেজ করে গর্জনতলী, ৪নং ওয়ার্ড, ৭নং খুটাখালী ইউনিয়ন,চকরিয়া, কক্সবাজার ঠিকানা দিয়ে স্মার্টকার্ড পেয়েছেন তিনি(নম্বর-২৩৭৮৭২৫৯৪৫)। ৭নং খুটাখালী ইউনিয়ন থেকে ২০১২ সালের ২৩ ডিসেম্বরজন্মসনদও নিয়েছেন। চলতি বছরের ২৭ ফেব্রুয়ারি পাসপোর্ট পেতেও আবেদন করেনতিনি।রেহেনা আকতার নামের আরেক রোহিঙ্গা নারী পেয়েছেন নির্বাচন কমিশনেরস্মার্টকার্ড (নম্বর-৩২৮৪২৩১৩৪১)। দরগাপাড়া, খুটাখালী, চকরিয়া, কক্সবাজারঠিকানা দিয়ে স্মার্ট কার্ড পেয়েছেন তিনি। ২০১২ সালের ১৩ মে একই ইউনিয়ন থেকেজন্মসনদও নিয়েছেন তিনি। রোহিঙ্গা হলেও তার মা লায়লা বেগম(নম্বর-৪৬১৬০২৯৪৩৭), ভাই নুরুল আলম (নম্বর-৮২২৮৪৯৭৯০৮) এবং মো. শওকত ওসমানও(নম্বর-৫৫২৪৮৭০৬৮৯) পেয়েছেন নির্বাচন কমিশনের স্মার্টকার্ড।
এনআইডি ও পাসপোর্ট জালিয়াতি
যশোরে ফের আলোচনায় শাহীন চাকলাদার
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৩৮
দেশজুড়ে চলমান দুর্নীতিবিরোধী অভিযানের মধ্যে যশোরে ফের আলোচনায় শাহীনচাকলাদার। সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের এই সাধারণসম্পাদকের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। মাত্র ১৬ বছর আগে একটি পৈতৃক ওষুধেরদোকান ছাড়া যার কিছুই ছিল না, এখন তার কী নেই। যশোরের লোকজন মজা করে বলেন,যেদিকে যাবেন, সেদিকেই চাকলাদার। গোয়েন্দা সংস্থাগুলোও নতুন করে তারব্যাপারে খোঁজখবর নিতে শুরু করেছে। বিভিন্ন সময় প্রকাশিত খবরের ভিত্তিতেদুদকও খোঁজ নিচ্ছে। আর দলের ভেতর থেকেও দাবি উঠেছে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থাগ্রহণের। এর আগে জাতীয় সংসদেও তার ব্যাপারে কথা বলেছেন স্থানীয় এমপি। তবেবরাবরের মতো এবারও অভিযোগ অস্বীকার করে নিজেকে নির্দোষ দাবি করেছেন শাহীনচাকলাদার নিজে।প্রাপ্ত অভিযোগে জানা গেছে, পিতার রেখে যাওয়া এম এম আলী সড়কে জামানফার্মেসি নামে একটি ওষুধের দোকান চালাতেন শাহীন চাকলাদার। ২০০১ সালে বিএনপিক্ষমতায় এলে ঠিকাদারির মাধ্যমে কিছু অর্থবিত্ত গড়েন। কখনই আওয়ামী লীগ এবংএর অঙ্গ ও সহযোগী কোনো সংগঠনের সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিলেন না। ২০০৩ সালে জেলাআওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটিতে স্থান পায় শাহীনের নাম। দলীয় নেতাকর্মীদেরচমকে দিয়ে পরের বছর গঠিত কমিটিতে তিনি সাধারণ সম্পাদক হন।শাহীন চাকলাদারের বিরুদ্ধে অভিযোগ, সাধারণ সম্পাদক হওয়ার পর মূলত এককআধিপত্য প্রতিষ্ঠায় মরিয়া হয়ে ওঠেন তিনি। সে লক্ষ্যেই দলীয় নির্দেশনাউপেক্ষা করে পদে পদে জায়গা করে দিয়েছেন নিজের লোকদের। চিহ্নিত অপরাধীদেরনিয়ে গড়ে তুলেছেন আলাদা টিম, যাদের বণ্টন করে দিয়েছেন নানা দায়িত্ব। কেউজমি দখলের দায়িত্বে নিযুক্ত তো কেউ চোরাচালানে। কেউ চাঁদাবাজিতে, কেউটেন্ডার ছিনতাইয়ের কাজে; আবার কেউ আছেন জুয়ার আসর পরিচালনায়। শাহীনেরচাচাতো ভাই তৌহিদ চাকলাদার ফন্টু, সদর থানা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদকশাহারুল ইসলাম, জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল,সাবেক সভাপতি রওশন ইকবাল শাহী এসব দলের নেতৃত্বে।স্থানীয়দের দেওয়া তথ্যমতে, ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায়আসার পর গত ১১ বছরে শাহীন বিপুল বিত্তবৈভবের মালিক হয়েছেন। কাজীপাড়ায় পৈতৃকবাড়ির বাইরে বিভিন্ন স্থানে বানিয়েছেন অনেক দালানকোঠা। কাঁঠালতলায় তৈরিকরেছেন আলিশান আধুনিক তিনতলা বাড়ি এবং বড়বাজারে দোতলা বাড়ি। সম্প্রতি কিনেনিয়েছেন ঐতিহ্যবাহী পারভীনা হোটেল। শহরের বিমান অফিসসংলগ্ন স্থানে রয়েছেভবনসহ জমি, আরবপুর মোড়ে পাঁচতলা বাড়ি, শহরের মাইকপট্টিতে হাজি সুমনের সঙ্গেযৌথ জমি, রাজধানীর মহাখালী ডিওএইচএসে ফ্ল্যাট, পেট্রোল পাম্প, ধর্মতলায়জমি। অভিযোগ রয়েছে, স্থানীয় এক নারীর জমি জালিয়াতি করে নিজের নামে লিখেসেখানে বানিয়েছেন জাবীর ইন্টারন্যাশনাল নামে ১৬ তলাবিশিষ্ট অভিজাত হোটেল।অনুসন্ধানে জানা গেছে, অনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য যশোরে জাবীরইন্টারন্যাশনালকে লোকজন এক নামে চেনে। যশোরের সর্ববৃহৎ জুয়ার আসর পালবাড়িররয়েল কমিউনিটিতে, যেটি শাহীনের লোকজনের নিয়ন্ত্রণে। তার অনুসারীদের মাধ্যমেশহর এবং শহরের আশপাশের এলাকায় অন্তত শতাধিক জুয়ার আসর বসার খবর পাওয়াগেছে।গত বছর সংসদে এ বিষয়গুলো উপস্থাপন করেছিলেন যশোর-৩ আসনের সংসদ সদস্য কাজীনাবিল আহমেদ। এর পর কিছুদিন জুয়ার আসর বন্ধ থাকলেও পরে চালু হয় আরও জোরগতিতে, যা নিয়ন্ত্রণ করে ফন্টু চাকলাদার ও টাক মিলন।তবে জুয়ার আসরের খবর অস্বীকার করেছেন যশোরের পুলিশ সুপার মঈনুল হক। তিনিসমকালকে বলেন, যশোরে জুয়া বা ক্যাসিনোর কোনো তথ্য পুলিশের কাছে নেই।গোয়েন্দাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে সম্প্রতি মনিরামপুর ও শার্শায় অভিযানচালানো হয়েছে। শহরের সবকিছু তাদের নজরদারিতে আছে বলে জানান তিনি।শাহীন চাকলাদার প্রসঙ্গে পুলিশ সুপার বলেন, তারা সাধারণত গোয়েন্দা নজরদারিরভিত্তিতেই অভিযান চালিয়ে থাকেন। শাহীনের বিরুদ্ধে জুয়ার আসর কিংবাচোরাচালানের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট তথ্য পেলে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবেন।এ মুহূর্তে যশোরের কোথাও জুয়ার আসর নেই বলে দাবি করেন কোতোয়ালি থানারভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মনিরুজ্জামানও। তিনি বলেন, দেশজুড়েঅভিযান শুরুর পর সেখানে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে। অভিযোগ পেলে যেকোনো স্থানেই পুলিশ অভিযান চালাবে। শাহীন চাকলাদারের সিন্ডিকেট, জুয়ারআসর, হোটেলে অনৈতিক কর্মকাণ্ড প্রসঙ্গে জানতে চাইলে 'রাজনৈতিক বিষয়ে কোনোমন্তব্য করা সমীচীন নয়' বলে দাবি করেন তিনি।যশোর আওয়ামী লীগের সভাপতি শহিদুল ইসলাম মিলনের কাছে তার কমিটির সাধারণসম্পাদকের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বিষয়টি এড়িয়ে যান। তবে তিনি চান, যশোরেযেন জুয়ার আসর না থাকে, কেউ যেন সন্ত্রাসী-চাঁদাবাজি সিন্ডিকেট গড়ে তুলতেনা পারে। তিনি বলেন, প্রশাসন অভিযান চালিয়ে অভিযুক্তদের আইনের আওতায় আনতেপারে।শাহীনের হাত ধরে দলে অনেক বিতর্কিত নেতা :১৯৭১ সালে পাকিস্তানি হানাদারবাহিনীর সঙ্গে হাত মিলিয়ে যশোরের একাধিক মুক্তিবাহিনীর বাড়ি পুড়িয়েদিয়েছিলেন আবদুল খালেক। তিনি বর্তমানে যশোর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি। আরেকসহসভাপতি এ কে এম খয়রাত কিছুদিন আগেও ছিলেন জামায়াতের রোকন। ১৯৯৬ সালেফ্রিডম পার্টির প্রার্থী রেজাউল ইসলাম বর্তমানে যশোর আওয়ামী লীগের বন ওপরিবেশবিষয়ক সম্পাদক। পাঁচ বছর আগের আওয়ামী লীগ নেতা মোশাররফ হত্যা মামলারআসামি এস এম আফজাল হোসেন এ কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক। বিএনপি পরিবারের দু'জনজিয়াউল হাসান হ্যাপি উপপ্রচার সম্পাদক এবং মইনুল আলম টুলু কোষাধ্যক্ষ।রোকেয়া পারভীন ডলির স্বামী স্থানীয় বিএনপি নেতা।এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের নির্বাহী কমিটির সদস্য হিসেবে জায়গা পান ছাত্রলীগনেতা রিপন হত্যা মামলার আসামি শাহারুল ইসলাম, বিএনপি নেতার ছেলে নাজমুলহাসান কাজল, বিএনপি পরিবারের সদস্য আবদুল মান্নান মিন্নু, মশিয়ার রহমানসাগর ও কবিরুল আলম। গত ২০ বছর লন্ডনে অবস্থানরত শওকত আলী ও মালয়েশিয়ায় আদমপাচারে পরিচিত শাহীন সরদারও এ কমিটির সদস্য।যশোর আওয়ামী লীগের এক শীর্ষ নেতা সমকালকে বলেন, যেভাবে দেশজুড়ে ক্যাসিনোচলছে, সেভাবেই এ ধরনের লোকজন দলে গুরুদায়িত্ব পেয়ে গেছেন। এখনই সময় তাদেরবিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার। যারা প্রশ্নবিদ্ধ লোকদের আওয়ামী লীগের নানা পদেআসীন করেছেন, তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিতে হবে।আওয়ামী লীগের আরেক নেতা বলেন, যারা দলের জন্য নিবেদিতপ্রাণ, দলের যে কোনোদুঃসময়ে যারা সাহসী ভূমিকা রেখেছেন, তারা উপেক্ষিত। যাদের বিরুদ্ধেমুক্তিযুদ্ধে বিতর্কিত কর্মকাণ্ডের অভিযোগ রয়েছে, দীর্ঘদিনবিএনপি-জামায়াতের রাজনীতি করেছেন, তাদেরকেই বিভিন্ন পদে বসিয়েছেন শাহীনচাকলাদার। নিজের অনৈতিক কর্মকাণ্ড নির্বিঘ্নে পরিচালিত করতেই বিতর্কিতদেরদলীয় পদে বসিয়েছেন বলে মনে করেন তিনি।কমিটিতে বিতর্কিত নেতাদের ঠাঁই পাওয়া প্রসঙ্গে যশোর আওয়ামী লীগের সভাপতিবলেন, দলীয় সভানেত্রী চাইলে শাহীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখে ব্যবস্থানিতে পারেন। এ বিষয়ে তার কিছুই করার নেই।দখলবাজি :যশোরের বিভিন্ন এলাকায় অন্যের জায়গাজমি বেদখল করে নেওয়ার অভিযোগআছে শাহীনের বিরুদ্ধে। তার প্রভাব খাটিয়ে চাচাতো ভাই পৌর মেয়র জহিরুল ইসলামচাকলাদার রেন্টু, কাউন্সিলর হাজি সুমন, চুড়ামনকাটি ইউপি চেয়ারম্যানমুন্না, কাউন্সিলর মোস্তফা, ইউপি চেয়ারম্যান সাগর, ইউপি চেয়ারম্যানশাহারুল, কাউন্সিলর সন্তোষ দত্ত, টাক মিলন, বিহারি ক্যাম্প এলাকার রবিনিরীহ মানুষের সম্পত্তি দখল করেন বলে জানা গেছে।অনুসন্ধানে জানা যায়, যশোরের প্রাণকেন্দ্রে একটি জমি দখলদারদের হাত থেকেফিরে পেতে শাহীনের কাছে গিয়েছিলেন স্থানীয় স্কুলশিক্ষিকা আনোয়ারা বেগম।কিন্তু জমি ফেরত পাওয়ার বদলে উল্টো ফেঁসে যান তিনি। শাহীন ওই নারীর জমিহাতিয়ে নেন। পরে মাত্র ১০ লাখ টাকা ধরিয়ে দিয়ে কয়েক কোটি টাকা মূল্যেরজমিটি নিজের নামে লিখে নেন শাহীন। সম্প্রতি সেই জমিতে গড়ে তুলেছেন ১৬তলাবিশিষ্ট অভিজাত হোটেল। এর পাশে গাজী ইলেকট্রিকের দোতলা মার্কেটের বড়একটি অংশ জোর করে দখলে নিয়েছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।সম্প্রতি শাহীন চাকলাদারের দখলবাজি নিয়ে একটি চিঠি পেয়েছে দুর্নীতি দমনকমিশন (দুদক)। দুদকের এক কর্মকর্তা জানান, বিষয়টি তারা খতিয়ে দেখছেন।ওই চিঠিতে উল্লেখ করা হয়, যশোরের মাইকপট্টি এলাকায় সেলিমের মার্কেটের একটিঅংশ, ভোলা ট্যাংক রোডে আল্লাহর দানের একটি অংশ, কাঁঠালতলা এলাকায় ঈদগাহেরএকটি অংশ, বকচরে সরকারি জায়গা দখল করে ব্যবসা প্রতিষ্ঠান তৈরি, মাহিদিয়াএলাকায় প্রায় ১০০ বিঘা বিলের জমি, জগহাটি এলাকার বিল, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে ২০০ বিঘার এড়োলের বিল, যশোর-নড়াইল সড়কে বীজ গোডাউনেরসামনে সওজের জায়গা দখল করে মার্কেট নির্মাণ, শহরের ঘোষপাড়ায় সাধন কুমারনামে এক ব্যক্তির প্রায় ১৫ কাঠা জমি দখলের অভিযোগ আছে। শাহীন নিজে এবং তারলোকজন এসব দখলবাজিতে জড়িত বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।এ ছাড়া সরকারি বিভিন্ন দপ্তরের নিলাম হলে আশপাশেই ভিড়তে পারেন না অন্য কেউ।জেলা রেজিস্ট্রি অফিস, ভূমি অফিস, সেটেলমেন্ট অফিস, বিআরটিএ অফিস,পাসপোর্ট অফিস, বিভিন্ন হাসপাতাল ও ক্লিনিক এবং কোচিং সেন্টারও শাহীনকেনিয়মিত চাঁদা দিতে বাধ্য। শাহীনের পৃষ্ঠপোষকতায় তার ক্যাডাররা খুনোখুনিতেপর্যন্ত জড়িত হয়ে গেছে। তাদের বিরুদ্ধে অগণিত হত্যা মামলায় সম্পৃক্ততারঅভিযোগ আছে। অনৈতিক কর্মকাণ্ডে একদল ক্যাডার :জানা গেছে, পুরাতন কসবা এলাকায় বিভিন্নঅনৈতিক কর্মকাণ্ডের নেতৃত্ব দেয় জাহিদ হোসেন মিলন ওরফে টাক মিলন। তারনেতৃত্বে ফিরোজ আলম, আলমগীর হোসেন, নূর নবী, কাজল, সোহাগ, বাবুল, সিরুবাবু,হাতকাটা মনিরুল, উজ্জ্বল, জিয়াদ, রাজ্জাক, সান্টু, মকা, কালাম, সোহাগ-২,মারুফসহ অনেকে সেখানে সার্বক্ষণিক তৎপর।শহরতলি পাগলাদহ এলাকায় রবি, ভাস্কর্য মোড়ে নান্নু, আরবপুরে সাইদুজ্জামানওরফে দাঁতাল বাবু ও বিশে, ধর্মতলা ও খড়কি এলাকায় হাফেজ, ভুট্টো, ডিকু ওশাওন, আরএন রোড এলাকায় কানা রুবেল, বারান্দি এলাকায় ইয়াবা জাকির ও অস্ত্রআরিফ, রেলস্টেশন এলাকায় শাকিল, কুদরত, তরিকুল ও সাইদুল, শংকরপুর এলাকায়ডেঞ্জার সোহাগ, বনি, বাপ্পী, ইসহাক, ডাবলু, শামিম, শাহাদত ও ইয়াসিন, উপশহরএলাকায় মুনসুর, চিমা ও সেলিম, শেখহাটি এলাকায় মোমেল ও জুয়েল, লালদীঘিএলাকায় চিকি সুমন ও সাইফুল, রেল রোডে রতন, টিবি ক্লিনিক এলাকায় ট্যাবলেটতুষার, বেজপাড়ায় প্রশান্ত, খায়ের ও সোহাগ, ঘোপ এলাকায় ফারাজি, বারান্দিমোল্লাপাড়ায় বাঁধন ফারাজি, পলাশ ও লিটন, বরফকল এলাকায় মোস্ত, খালধার রোডএলাকায় চোর শাকিব, মুড়লিতে নাসির, পুলেরহাট এলাকায় মামুন, হাসান, আজিজুল,মামুন, ভুট্টো, বাবু, বক্কার, টিটো, টাক জনি, স্বপন ও টোকন, ঝুমঝুমপুরএলাকায় কসাই জাভেদ ও রবিউল, জামরুলতলা এলাকায় জুয়েলের নেতৃত্বে হয় সব ধরনেরসমাজবিরোধী কার্যক্রম।চোরাচালান সিন্ডিকেটে যারা :জানা গেছে, যশোর শহরে এখন চোরাচালান সিন্ডিকেটনিয়ন্ত্রণ করেন শাহীন চাকলাদারের অন্যতম সহযোগী ইউপি চেয়ারম্যান শাহারুলইসলাম, যশোর পৌরসভার কাউন্সিলর গোলাম মোস্তফা, ইউপি চেয়ারম্যান আবদুলমান্নান মুন্না প্রমুখ। এর মধ্যে সোনা চোরাচালানের দিকটা নিয়ন্ত্রণ করেনজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল, উপশহর ইউপিচেয়ারম্যান এহসানুল হক লিটু, মুনসুর, ডিশ বাবু ও বেনাপোলের আকুল।অস্ত্র চোরাচালান ও ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করেন ফন্টু চাকলাদার, টাক মিলন, হাজিসুমন (কাউন্সিলর), গোলাম মোস্তফা (কাউন্সিলর), আরিফ, শাকিল, রবি, দাঁতালবাবু, মুনসুর, চিমা, সান্টু ও টালিখোলার জাভেদ।যশোরে যে কোনো সরকারি দপ্তরের সব দরপত্র নিয়ন্ত্রণ হয় কাঁঠালতলা সিন্ডিকেটথেকে। টেন্ডার হলেই সেসব অফিসে নিয়মিত পাহারার ব্যবস্থা করা হয় সিন্ডিকেটেরসদস্যদের দ্বারা। এটি নিয়ন্ত্রণ করে ফন্টু চাকলাদার। তার সঙ্গে থাকে টাকমিলন, হাজি সুমন, আলমগীর, বিপুল, শাহী প্রমুখ।মাদক চোরাচালান ও বিক্রির দায়িত্বে নিযুক্ত আছে ইয়াবা জাকির। এ ছাড়া শাহী,জিসান, কাজল, জিয়া, রহমত, প্রান্ত, সোহাগ ও মনু এসব নিয়ন্ত্রণ করে।শহরের প্রবেশমুখ চাঁচড়া, চুড়ামনকাটি, উপশহর, মণিহার, মুড়লি, রাজারহাটসহশহরের ভেতরে প্রতিটি মোড়ে এরা বিভিন্ন যানবাহন থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায় করেবলে জানা গেছে। এমনকি রিকশা, ভ্যান, ইজিবাইকও চাঁদাবাজি থেকে রেহাই পায় না।শাহীন চাকলাদারের বক্তব্য :সমকালের পক্ষ থেকে জানতে চাইলে অভিযোগগুলোঅস্বীকার করেন শাহীন চাকলাদার। জুয়ার আসর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, এ ধরনেরকর্মকাণ্ড তিনি ঘৃণা করেন। তার রাজনৈতিক উত্থান জানতে চাইলে উত্তেজিত হয়েবলেন, 'আমি একসময় জামায়াতের সেক্রেটারি ছিলাম। এখন আওয়ামী লীগের সেক্রেটারিহয়েছি। তাতে কোনো সমস্যা আছে?'বিতর্কিতদের দলে জায়গা দেওয়ার বিষয়ে তিনি বলেন, বিতর্কিত কাউকেই পদ দেওয়াহয়নি। খয়রাত মুক্তিযোদ্ধা ছিলেন। রেজাউল আওয়ামী লীগের মাঠকর্মী ছিলেন।শাহীন নিজেও যুবলীগের নানক-মির্জা আজম কমিটির সদস্য ছিলেন বলে দাবি করেন।জমি দখল, সিন্ডিকেট এবং চোরাচালান বিষয়ে জানতে চাইলে একটি জাতীয় দৈনিকেরউদ্ধৃতি দিয়ে তিনি বলেন, 'যশোরে চাকলাদারই সব- এমন শিরোনাম দিয়ে নিউজকরেছিল। কিছুই হয়নি। মামলা করার প্রস্তুতি নিয়েছিলাম। তারা মাফ চাওয়ায় আরকরিনি।'
আলোচনায় শাহীন চাকলাদার
কামরুল-হ্যারির হাত ধরে ঢাকায় আসে ক্যাসিনো
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৪০ | আপডেট: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৪০
রাজধানীর আরামবাগের একসময়ের বড় ব্যবসায়ী কামরুল ইসলাম জুয়া খেলতেনক্লাবগুলোতে। ক্যাসিনো খেলতে যেতেন নেপাল, থাইল্যান্ডসহ বিশ্বের বিভিন্নদেশে। এর সূত্র ধরেই নেপালি নাগরিক হ্যারির সঙ্গে পরিচয় তার। হ্যারি নিজেওজুয়ার বিশেষজ্ঞ। তবে তিনি নিজে খেলেন না, অন্যকে দিয়ে খেলান। নেপালে তিনিক্যাসিনো বিশেষজ্ঞ হিসেবে পরিচিত। কামরুলের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্রে হ্যারিরহাত ধরে প্রথম ঢাকায় আসে ক্যাসিনো সরঞ্জাম। ২০১৬ সালের শেষের দিকেপ্রভাবশালী নেতাদের ছত্রছায়ায় মতিঝিলের ওয়ান্ডারার্স ক্লাবে বসানো হয়ক্যাসিনো। এরপরই যেন আলাদিনের চেরাগ হাতে পান যুবলীগের কয়েকজন নেতা। তারাঝুঁকে পড়েন কামরুল আর হ্যারির দেখানো পথে। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও মতিঝিলেরক্লাবপাড়ার সংশ্নিষ্ট সূত্রে মিলেছে এসব তথ্য।সূত্র বলছে, নেপালি নাগরিক হ্যারি গত তিন বছরে বারবার বাংলাদেশে এসেছেন।কামরুলের সঙ্গে পরিচয়ের সূত্র ধরে তিনি এদেশে ক্যাসিনো সরঞ্জাম এনে তাক্লাবগুলোতে স্থাপন করেছেন। এগুলো চালাতে নিজেই নেপালিদের বাংলাদেশে নিয়েআসেন। গত ১৮ সেপ্টেম্বর মতিঝিল এলাকায় ক্যাসিনোতে অভিযান চালানোর সময়ে তিনিমতিঝিল এলাকায় ছিলেন। এরপরই আত্মগোপনে চলে যান। গত রোববার পর্যন্ত তিনিবাংলাদেশেই আত্মগোপনে রয়েছেন বলে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে তথ্য রয়েছে।অন্যদিকে যে কামরুলের হাত ধরে ঢাকায় ক্যাসিনো সরঞ্জাম স্থাপন করা হয়েছে,ক্যাসিনো খেলে সেই কামরুলও এখন নিঃস্ব। সব সম্পদ হারিয়ে তিনি ক্লাবপাড়াতেইথাকতেন। তবে র‌্যাবের অভিযানের মুখে আত্মগোপনে চলে গেছেন। সর্বশেষ তিনি বিভিন্নজুয়াড়ির দেওয়া ৫০০ টাকা ১০০০ টাকার অনুদানে ক্যাসিনো খেলতেন। আইন-শৃঙ্খলাবাহিনীর সদস্যরা এখন তাদের হন্যে হয়ে খুঁজছেন।সূত্রগুলো বলছে, কামরুলের কোনো রাজনৈতিক পরিচয় নেই, প্রভাবও নেই। ক্যাসিনোস্থাপনে শুধু তাকে ব্যবহার করা হয়েছে। এক্ষেত্রে ঢাকা মহানগর দক্ষিণ যুবলীগথেকে বহিস্কৃত সাংগঠনিক সম্পাদক খালেদ মাহমুদ ভূঁইয়া ও পলাতক ওয়ার্ডকাউন্সিলর মমিনুল হক সাঈদ ব্যবহার করেছেন তাকে। এ ছাড়া কামরুলকে ব্যবহারকরে কোটিপতি হয়েছেন পুরান ঢাকার তিন ভাই রশীদুল হক ভূঁইয়া, এনামুল হক ওরফেএনু ভূঁইয়া এবং রুপন ভূঁইয়া।র‌্যাব-৩-এর অধিনায়ক লে. কর্নেল শাফীউল্লাহ বুলবুল সমকালকে বলেন, 'আগেরঅভিযানগুলোর পর আমরা পুরো বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করছি। অনেক তথ্য এবং অনেকেরনামই বেরিয়ে আসছে। তদন্ত পর্যায়ে এখনই কিছু বলা যাচ্ছে না।'ক্যাসিনোকাণ্ডের ঘটনাগুলোর তদন্তের সঙ্গে সংশ্নিষ্ট কর্মকর্তারা বলছেন,হ্যারির নেতৃত্বে নেপালি একটি গ্রুপ ঢাকায় ক্যাসিনো বসালেও ঢাকার কিছুপেশাদার জুয়াড়ি এতে সহায়তা করে। তাদের শেল্টার দেন যুবলীগের কয়েক নেতা।তারা সব দিক ম্যানেজ করে ক্লাবে ক্যাসিনো কারবার স্বাভাবিকভাবে চালাতেসহায়তা করেন। এতে নেতাদের কেউ দৈনিক, সাপ্তাহিক ও মাসিক ভিত্তিতে মোটাঅঙ্কের টাকা পেতেন। ক্লাব সংশ্নিষ্ট কিছু অসাধু কর্মকর্তাও মোটা অঙ্কেরটাকা পেয়ে অবৈধভাবে স্পোর্টিং ক্লাবগুলোকে ক্যাসিনো বসাতে সহায়তা করেন।তদন্তে পাওয়া সবার নাম তালিকাভুক্ত করা হচ্ছে।আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ও ক্লাবপাড়ার সংশ্নিষ্ট সূত্র জানায়, প্রভাবশালীনেতাদের নির্দেশে ঢাকায় আরও অন্তত ১০টি ক্যাসিনো বসানোর পরিকল্পনা ছিলনেপালি নাগরিক হ্যারির। এতে সহায়তা দিয়ে আসছিল পুরান ঢাকার গে ারিয়ার রশীদভূঁইয়া, এনামুল হক এনু ভূঁইয়া ও রুপন ভূঁইয়া নামের তিন ভাই। র‌্যাব তাদেরবাড়িতে অভিযান চালিয়ে পাঁচ কোটি টাকা উদ্ধারের পর তারাও আত্মগোপনে রয়েছে।এর বাইরে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের ক্যাসিনোর অংশীদার হিসেবে করিম, মোবারক ওসানি নামে আরও তিনজন রয়েছে। তাদের হয়ে পাভেল সবকিছু দেখভাল করত। তবে তারাসবাই পলাতক।স্থানীয় লোকজন জানিয়েছে, এনামুল ভূঁইয়াদের বাবা সিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়ানব্বইয়ের দশকে ওয়ান্ডারার্স ক্লাবের দারোয়ান ছিলেন। ক্লাবে চলা জুয়ারবোর্ডের সদস্যরা তাকে ২০ টাকা থেকে শুরু করে ৫০ টাকা বকশিশ দিতেন। ওই সময়েক্লাবগুলোর নিয়ন্ত্রণ ছিল আরামবাগের নাসির নামে এক সন্ত্রাসীর হাতে। নাসিরএসব ক্লাব থেকে নিয়মিত মাসোহারা নিতেন। তার কাছ থেকে কিছু টাকা পেতেনসিরাজুল ইসলাম ভূঁইয়া। এক পর্যায়ে নাসির খুন হয়ে গেলে ওই মামলায় সিরাজুলভূঁইয়া কয়েক বছর জেলও খাটেন। কারাগার থেকে বেরিয়ে নিজেই জুয়ার নিয়ন্ত্রণনেন। তার হাত ধরেই তার ছেলেরা প্রথমে হাউজি জুয়ার দেখভাল শুরু করে। একপর্যায়ে তারা ক্যাসিনো মালিক বনে যায়।লোকমান ভূঁইয়া ও ফিরোজ ফের রিমান্ডে :মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের পরিচালক ওবাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক লোকমান হোসেন ভূঁইয়া এবংকলাবাগান ক্রীড়া চক্রের সভাপতি সফিকুল আলম ভূঁইয়া ফিরোজকে ফের রিমান্ডেনেওয়া হয়েছে। গতকাল তাদের পৃথক আদালতে হাজির করে লোকমান ভূঁইয়াকে দু'দিনেররিমান্ডে নেওয়া হয় এবং ফিরোজকে পাঁচ দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়।পুলিশ ও আদালত সূত্র জানায়, লোকমানের দু'দিনের রিমান্ড শেষে গতকাল তাকেআদালতে হাজির করে ফের পাঁচ দিনের রিমান্ড চান তদন্তকারী কর্মকর্তা তেজগাঁওথানার এসআই কামরুল ইসলাম। মাদক আইনে দায়ের করা মামলায় উভয়পক্ষের শুনানিশেষে জামিন আবেদন নাকচ করে দু'দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন হাকিম। এর আগে ২৭সেপ্টেম্বর ঢাকা মহানগর হাকিম তার দু'দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছিলেন। গত ২৫সেপ্টেম্বর বিপুল পরিমাণ মদসহ র‌্যাব তাকে গ্রেফতার করেছিল। এর আগে ২০সেপ্টেম্বর গ্রেফতার হয়েছিলেন ফিরোজ।
ক্যাসিনো
পেঁয়াজের সেঞ্চুরি
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ১৩:৪১
রাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে পেঁয়াজের দাম লাগামহীন। কাঁচাবাজারে এক কেজিপেঁয়াজের দাম সেঞ্চুরি ছাড়িয়েছে। গতকাল সোমবার এক দিনের ব্যবধানেই পণ্যটিরদাম এক লাফে কেজিতে বেড়েছে ৪০ টাকা। ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধের ঘোষণাদেওয়ার পরপরই দেশে অসাধু ব্যবসায়ীরা অস্বাভাবিকভাবে দাম বাড়ালেন। গতকালরাজধানী ঢাকাসহ সারাদেশে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ১১০ থেকে ১২০ টাকা ওআমদানি করা পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১১০ টাকায় কিনেছেন ক্রেতারা।পরিসংখ্যানে দেখা যায়, দু'সপ্তাহের ব্যবধানে পেঁয়াজের দাম কেজিতে বেড়েছে ৭০টাকা। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির কারণে বাজারে সব ধরনেরপেঁয়াজে চড়া দাম দিতে হচ্ছে ক্রেতাদের। গত ১৩ সেপ্টেম্বর ভারতের স্থানীয়বাজার নিয়ন্ত্রণে নূ্যনতম রফতানি মূল্য ৮৫০ ডলার বেঁধে দেয় দেশটির বৈদেশিকবাণিজ্য অধিদপ্তর। এ ঘোষণার পর ১৪ সেপ্টেম্বর থেকে দেশের বাজারে পেঁয়াজেরদাম বেড়ে যায়। ওই সময়ে কেজিতে ৩০ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ ৮০ ও ভারতীয় পেঁয়াজ৭০ টাকায় বিক্রি হয়। সম্প্রতি ভারতের স্থানীয় বাজারে পেঁয়াজের দাম বেড়েযাওয়ায় গত রোববার প্রতিবেশী দেশটি পেঁয়াজ রফতানিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে। এরফলে গতকাল দেশের বাজারে কেজিতে ৪০ টাকা বেড়ে দেশি পেঁয়াজ ১২০ ও আমদানিপেঁয়াজ ১১০ টাকায় উঠেছে। এ ছাড়া ঈদুল আজহার আগেই নানা কৌশলে বাজারে প্রথমদফায় পেঁয়াজের দাম বাড়ান ব্যবসায়ীরা। গত ৭ জুলাই কেজিতে ১৫ টাকা বেড়ে দেশিপেঁয়াজ ৫০ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ৪৫ টাকায় বিক্রি হয়। এর একদিন আগেও দেশি পেঁয়াজ৩০ থেকে ৩৫ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ২৮ থেকে ৩০ টাকা ছিল। দাম আরও বাড়তে পারে- এ আশঙ্কায় গতকাল ঢাকার বাজারে ক্রেতারা হুমড়ি খেয়েপড়েন। অনেকে বেশি বেশি করে কিনেছেন। এ সুযোগ নেন অসাধু ব্যবসায়ীরা। এদিকেবাণিজ্য সচিব মো. জাফর উদ্দীন হুঁশিয়ার করেছেন, কেউ পেঁয়াজের মজুদ করেবাজার অস্থির করলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। বাজার স্থিতিশীল রাখতেন্যায্যমূল্যে পেঁয়াজ বিক্রি বাড়িয়েছে টিসিবি। বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহথাকলেও ব্যবসায়ীরা দাবি করছেন, আমদানি করা পেঁয়াজের সরবরাহ সংকটে দামবেড়েছে। তবে এত অল্প সময়ের ব্যবধানে পেঁয়াজের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধিঅযৌক্তিক মনে করছে সরকার ও ক্রেতারা।গতকাল রাজধানীর মিরপুর ১ নম্বর বাজারের পেঁয়াজ বিক্রেতা জিয়াউর রহমান বলেন,পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাওয়ার খবরে ক্রেতারাও বেশি কিনছেন। একজন ক্রেতা গতকালসকালে পাঁচ কেজি কিনেছেন। ওই ক্রেতা দুপুরে আরও ১০ কেজি নিয়ে গেছেন। দাম বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বিক্রিও বহুগুণ বেড়েছে। অন্যদিন দুই বস্তা পেঁয়াজবিক্রি করলেও গতকাল ছয় বস্তা বিক্রি করেছেন। এই বাজারের শ্রীরাম ভান্ডারেরপাইকারি ব্যবসায়ী কানাই লাল সাহা বলেন, কাঁচামালের দাম বাড়লে কেনাবেচা বেশিহয়। এ বাজারে প্রতিদিন ২০০ বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি হলেও গতকাল ৫৫০ থেকে ৬০০বস্তা পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে। উত্তর পীরেরবাগ বাজারের দোকানি জসিম উদ্দিনজানান, এখন দেশি পেঁয়াজ ১২০ ও ভারতীয় পেঁয়াজ ১১০ টাকা কেজি। এই পেঁয়াজরোববার সকালেও যথাক্রমে ৮০ ও ৭০ টাকায় বিক্রি করেছেন। গতকাল পাইকারি বাজারথেকে এই পেঁয়াজ দ্বিগুণ দামে কিনেছেন বলে জানান তিনি। গতকাল রাজধানীর কারওয়ান বাজার ও পুরান ঢাকার শ্যামবাজার আড়তে পাইকারি প্রতিকেজি দেশি পেঁয়াজ ১০০ থেকে ১০৫ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৯০ থেকে ৯৫ ওমিয়ানমারের পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়। এই আড়তগুলোতে মিয়ানমারেরপেঁয়াজ আলাদা দামে তেমন বিক্রি হয়নি। সবই ভারতীয় বলে চড়া দামে বিক্রি করাহয়। গত রোববার সকালে শ্যামবাজারের পাইকারি আড়তে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫৮থেকে ৬০ টাকা, ভারতীয় পেঁয়াজ ৫৪ থেকে ৫৫ ও মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৫০ থেকে ৫২টাকা কেজি ছিল। এ হিসাবে পাইকারিতে প্রায় দ্বিগুণ বেড়েছে। এই পেঁয়াজআমদানিতে বাড়তি মূল্য না দিয়েই কেজিতে ৪০ টাকা অতিরিক্ত মুনাফা করছেনব্যবসায়ীরা।শ্যামবাজারের ব্যবসায়ী ও পেঁয়াজ আমদানিকারক রতন সাহা সমকালকে জানান, ভারতরফতানিতে নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার ফলে আমদানির বিভিন্ন পর্যায়ে থাকা পেঁয়াজশিপমেন্ট বন্ধ হয়ে যায়। এতে সরবরাহ ঘাটতির আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে ব্যবসায়ীদেরমধ্যে। তিনি দাবি করেন, বর্তমানে বাজারে পেঁয়াজ থাকলেও পাইপলাইনে তেমন নেই।ফলে আগামী দিনে আরও সংকট তৈরি হতে পারে। কারণ, মিসর ও তুরস্ক থেকে পেঁয়াজআসতে সময়ের প্রয়োজন হবে। এ সময়ের মধ্যে ভারত পেঁয়াজ রফতানি নিষেধাজ্ঞা তুলেনিলে আমদানি করে বিপাকে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। ভারতীয় পেঁয়াজ আসা শুরু হলেমিসর ও তুরস্কের পেঁয়াজের চাহিদা কমায় দামও কমে যায়। এ কারণে ঝুঁকি নিয়েআমদানি করতে চান না ব্যবসায়ীরা। তিনি বলেন, এ ক্ষেত্রে দুই দেশের সরকারেরমধ্যে চুক্তি করে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দ্রুত আমদানির ফলে সংকটের সমাধানসম্ভব। মিয়ানমারের পেঁয়াজ ভারতীয় নামে বেশি দামে বিক্রি :বাজারে দাম বেড়ে যাওয়ায়মিয়ানমার থেকে কম দামে পেঁয়াজ আমদানি হচ্ছে। রাজধানীর পাইকারি ও খুচরাবাজারে মিয়ানমারের এই পেঁয়াজ ভারতীয় বলে চড়া দামে বিক্রি করছেন ব্যবসায়ীরা।কারওয়ান বাজারে মিয়ানমারের পেঁয়াজ ৯০ টাকা কেজিতে বিক্রি হতে দেখা যায়।শ্যামবাজারে এই পেঁয়াজ ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। একই পেঁয়াজ খুচরায় ১১০ টাকাকেজিতে কিনছেন ক্রেতারা। অথচ মিয়ানমার থেকে আমদানি করা পেঁয়াজের দাম পড়ছে৪০ টাকা কেজি। কারসাজি করলে ব্যবস্থা নেবে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় :বাণিজ্য সচিব ড. মো. জাফরউদ্দীন গতকাল মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ভারত পেঁয়াজ রফতানি বন্ধকরায় উদ্বিগ্ন হওয়ার কোনো কারণ নেই। দেশে পর্যাপ্ত পেঁয়াজ মজুদ আছে।পাশাপাশি মিয়ানমার, তুরস্ক ও মিসর থেকে পেঁয়াজ আমদানি শুরু হয়েছে। একইসঙ্গে টিসিবির ট্রাক সেল বাড়ানোর সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া পেঁয়াজের সরবরাহ,বাজারদর পর্যবেক্ষণে বাণিজ্য মন্ত্রণালয় ১০টি মনিটরিং টিম গঠন করেছে। এসবটিম দেশের যেসব অঞ্চল থেকে বেশি বেশি পেঁয়াজ সরবরাহ হয় এবং পাইকারিবাজারগুলো মনিটর করবে। একই সঙ্গে কোথাও কোনো পক্ষ পেঁয়াজের সরবরাহবাধাগ্রস্ত করলে বা কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করলে তার বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থানেবে এসব টিম। বাণিজ্য সচিব বলেন, ট্যারিফ কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিদিন ছয় হাজারটন পেঁয়াজের চাহিদা রয়েছে। দেশের প্রধান পেঁয়াজ উৎপাদনকারী অঞ্চল বৃহত্তরফরিদপুর, পাবনাসহ সারাদেশে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, প্রায় তিন লাখ টন পেঁয়াজচাষি ও ব্যবসায়ীদের কাছে মজুদ আছে, যা দিয়ে আগামী ৫০ থেকে ৫৫ দিন দেশেরপেঁয়াজের চাহিদা মেটানো সম্ভব। এ সময়ের মধ্যে দেশে নতুন পেঁয়াজ বাজারে চলেআসবে। ফলে পেঁয়াজের বাজারে অস্থিরতার কোনো কারণ নেই।সচিব আরও বলেন, এসব মজুদ পেঁয়াজ যাতে স্বাভাবিকভাবে বাজারে সরবরাহ করা হয়এবং বাজারের কোনো পক্ষ যাতে কারসাজি করতে না পারে, সে জন্য বাণিজ্যমন্ত্রণালয়ের তদারকি টিমগুলো কাজ করবে। পাশাপাশি সংশ্নিষ্ট জেলার ডিসিরাও এবিষয়ে উদ্যোগ নেবেন। মনিটরিং টিমগুলো রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন বাজারেপেঁয়াজের সরবরাহ ও মূল্য পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে। ফলে আশা করা যাচ্ছে,পেঁয়াজের বাজার স্বাভাবিক থাকবে। সচিব বলেন, দেশে পেঁয়াজের দর নির্ধারণ হয়আমদানি মূল্যের ওপর। আমদানি মূল্য বেড়ে যাওয়ায় দাম বেড়েছে। তবে তাকোনোভাবেই অস্বাভাবিক পর্যায়ে যেতে দেওয়া হবে না।টিসিবির পেঁয়াজের কেজি ৪৫ টাকা :দুর্গাপূজা সামনে রেখে বাজারদর নিয়ন্ত্রণেরাখতে ঢাকা মহানগরসহ সারাদেশে ট্রাকে করে পেঁয়াজসহ কয়েকটি নিত্যপ্রয়োজনীয়পণ্য বিক্রিতে নেমেছে রাষ্ট্রায়ত্ত বিপণন সংস্থা ট্রেডিং করপোরেশন অববাংলাদেশ (টিসিবি)।বাণিজ্য সচিব জানান, এত দিন রাজধানীতে ১৬টি ট্রাকে টিসিবি পেঁয়াজ বিক্রিকরত। কাল (মঙ্গলবার) থেকে ৩৫টি ট্রাকে করে ৪৫ টাকা কেজি দরে পেঁয়াজ বিক্রিকরা হবে। টিসিবি কত দিন পেঁয়াজ বিক্রি করবে- জানতে চাইলে বাণিজ্য সচিববলেন, বাজারের প্রয়োজন অনুযায়ী বিক্রি করা হবে। যত দিন বাজার স্বাভাবিক নাহচ্ছে, তত দিন এই বিক্রি চলবে।ঢাকাসহ বিভাগীয় শহরগুলোতে এসব পণ্য সাশ্রয়ী মূল্যে বিক্রি করা হবে বলেটিসিবির প্রধান তথ্য কর্মকর্তা হুমায়ুন কবির জানিয়েছেন। তিনি বলেন, টিসিবিনির্ধারিত স্থানগুলোতে ট্রাক থেকে জনসাধারণ কেজিপ্রতি পেঁয়াজ ৪৫ টাকায়,চিনি ও মশুর ডাল ৫০ টাকা ও সয়াবিন তেল প্রতি লিটার ৮৫ টাকায় কিনতে পারবেন।বিজ্ঞপ্তিতে টিসিবি জানিয়েছে, একজন ক্রেতা সর্বোচ্চ দুই কেজি পেঁয়াজ, চারকেজি চিনি, চার কেজি ডাল ও পাঁচ লিটার সয়াবিন তেল কিনতে পারবেন। গতকালবাজারে চড়া দাম থাকায় ন্যায্যমূল্যে টিসিবির পেঁয়াজ কিনতে ভিড় করেছে সাধারণমানুষ। দীর্ঘ লাইনে অপেক্ষা করে ৪৫ টাকা কেজিতে পেঁয়াজ কিনছেন তারা।রাজধানীর মতিঝিলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সামনে ও ফার্মগেটে টিসিবির পণ্য কিনতেলম্বা লাইন দেখা গেছে। ভোক্তাদের সংগঠন কনজ্যুমার অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সাধারণ সম্পাদকহুমায়ুন কবির সমকালকে বলেন, দেশি এবং আগে কম দামে আমদানি করা পেঁয়াজের দামঅস্বাভাবিকভাবে বাড়ানোর কোনো যৌক্তিকতা নেই। কিছু অসাধু ব্যবসায়ী কারসাজিকরে দাম বাড়িয়েছেন। এটা অতি মুনাফার লোভে করছেন তারা। পেঁয়াজের দাম নিয়েঅস্থিরতা বন্ধে সরকারের পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তিনি বলেন, টিসিবির এত কমসক্ষমতা নিয়ে বাজার নিয়ন্ত্রণে কার্যকর ভূমিকা রাখা সম্ভব নয়। রাষ্ট্রায়ত্তএই সংস্থাটিকে আরও শক্তিশালী করা উচিত। পাশাপাশি বাজার স্বাভাবিক রাখতেঅভিযান জোরদার করতে হবে। ক্রেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পেঁয়াজ পরিমিত কেনাউচিত। যাতে বাজারে অস্থিরতা তৈরি না হয়। কারণ, পেঁয়াজের বাড়তি এ দাম থাকবেনা।
পেঁয়াজের সেঞ্চুরি
দেশে ফিরেছেন প্রধানমন্ত্রী
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২১:৪০ | আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ | ০৯:০৮
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের (ইউএনজিএ) ৭৪তম অধিবেশনে যোগদানের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে আটদিনের সরকারি সফর শেষে দেশে ফিরেছেন।প্রধানমন্ত্রী ও তার সফরসঙ্গীদের বহনকারী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের একটি ফ্লাইট মঙ্গলবার ভোর ৫টা ৫০ মিনিটে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করে। খবর বাসসের।মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক মন্ত্রী আ ক ম মোজাম্মেল হক, সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, যুব ও ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী মো. জাহিদ আহসান রাসেল, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী মো. আশরাফ আলী খান খশরু, বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটন প্রতিমন্ত্রী মো. মাহবুব আলী, মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ শফিউল আলম, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব নজিবুর রহমান, বেসামরিক বিমান ও পর্যটন সচিব মো. মুহিবুল হক এবং পদস্থ বেসামরিক ও সামরিক কর্মকর্তারা বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানান।এর আগে যুক্তরাষ্ট্রের জনএফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ছেড়ে আসা প্রধানমন্ত্রী ও তার সফর সঙ্গীদের বহনকারী ইতিহাদ এয়ারওয়েজের ফ্লাইট (ইওয়াই-১০০) সোমবার স্থানীয় সময় রাত ৮টায় আবুধাবি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দরে অবতরণ করে। আবুধাবিতে প্রায় তিন ঘণ্টা যাত্রা বিরতির পর প্রধানমন্ত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ফ্লাইটে করে ঢাকার উদ্দেশে আবুধাবি ত্যাগ করেন। এ সময় আমিরাতে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ ইমরান বিমান বন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।এর আগে গত ২৯ সেপ্টেম্বর স্থানীয় সময় রাত ১১টা ৩৫ মিনিটে ফ্লাইটটি আবুধাবির উদ্দেশে নিউইয়র্কের জনএফ কেনেডি আন্তর্জাতিক বিমান বন্দর ত্যাগ করে।যুক্তরাষ্ট্রে নিযুক্ত বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত মোহাম্মদ জিয়া উদ্দিন এবং জাতিসংঘে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ও স্থায়ী প্রতিনিধি মাসুদ বিন মোমেন বিমান বন্দরে প্রধানমন্ত্রীকে বিদায় জানান।প্রধানমন্ত্রী ইউএনজিএ’র ৭৪তম অধিবেশনে যোগ দিতে গত ২০ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করেন।শেখ হাসিনা ২৭ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘ সদর দফতরে ইউএনজিএ’র অধিবেশনে ভাষণ দেন এবং জাতিসংঘ মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেসের সঙ্গে বৈঠক করেন।নিউইয়র্কে তিনি সার্বজনীন স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জলবায়ু পরিবর্তন অভিযোজন, টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্য (এসডিজি), পররাষ্ট্র সম্পর্ক, রোহিঙ্গা সংকট, শিক্ষা ও বৈশ্বিক মাদক সমস্যা বিষয়ে বেশ কয়েকটি উচ্চ পর্যায়ের অনুষ্ঠানে যোগ দেন।প্রধানমন্ত্রী দুটি আন্তর্জাতিক পুরস্কার পান। এগুলো হচ্ছে-যুবকদের দক্ষতা উন্নয়ন এবং টিকাদান কর্মসূচিতে বংলাদেশের ব্যাপক সাফল্যের স্বীকৃতি হিসেবে যথাক্রমে ইউনিসেফের ‘চ্যাম্পিয়ন অব স্কিল ডেভেলপমেন্ট ফর ইয়ুথ’ ও জিএভিআই-এর ‘ভ্যাকসিন হিরো’ পুরস্কার।জাতিসংঘ সাধারণ পরিষদের অধিবেশনে যোগদানের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, উন্নয়নের জন্য অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থায়ন বিষয়ক জাতিসংঘ মহাসচিবের স্পেশাল অ্যাডভোকেট ডাচ রানী ম্যাক্সিমা এবং বিল অ্যান্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার বিল গেটসসহ বেশ কয়েকজনের সঙ্গে দ্বিপক্ষীয় বৈঠক করেন।প্রধানমন্ত্রী মার্কিন প্রেডিসেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের দেওয়া এক সংবর্ধনায় যোগ দেন।তিনি যুক্তরাষ্ট্র আওয়ামী লীগ আয়োজিত নাগরিক সংবর্ধনা এবং যুক্তরাষ্ট্র চেম্বার অব কমার্স আয়োজিত মধ্যাহ্নভোজ গোলটেবিল বৈঠকে যোগ দেন।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, জাতিসংঘ
টেকনাফে 'বন্দুকযুদ্ধে' নিহত ২
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২১:৪৭ | আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ | ০৩:৫৮
কক্সবাজারের টেকনাফে পুলিশের সঙ্গে 'বন্দুকযুদ্ধে' দুই ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশের দাবি, তারা মাদক ব্যবসায়ী ছিলেন।মঙ্গলবার ভোরে টেকনাফের উত্তর শীলখালী পাহাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।নিহতেরা হলেন-টেকনাফের উত্তর শিলখালী গ্রামের উলা মিয়ার ছেলে মোহাম্মদ আমীন (৩৭) ও মৌলভী পাড়ার মোহাম্মদের ছেলে হেলাল উদ্দিন (২১)। টেকনাফ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রদীপ কুমার দাশ জানান, আগে ওই মাদক ব্যবসায়ীদের গ্রেফতার করা হয়। পরে তাদের স্বীকারোক্তি অনুযায়ী মঙ্গলবার ভোরে উত্তর শীলখালী পাহাড়ি এলাকায় মজুদ রাখা ইয়াবা ও অস্ত্র উদ্ধারে যায় পুলিশের একটি দল। এসময় গ্রেফতার দলের লোকজন পুলিশকে লক্ষ্য করে গুলি চালিয়ে তাদের ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। পরে পুলিশও অত্মরক্ষার্থে পাল্টা গুলি চালায়। হামলাকারীরা পালিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে গুলিবদ্ধ অবস্থায় ওই দুইজনককে উদ্ধার করে টেকনাফ স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে যাওয়া হয়। জরুরি বিভাগের চিকিৎসক তাদের কক্সবাজার সদর হাসপাতালে পাঠালে সেখানে তাদের মৃ্ত্যু হয়। ওসি জানান, এ ঘটনায় তিন পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ঘটনাস্থল থেকে দুইটি এলজি, সাত রাউন্ড শর্টগানের তাজা কার্তুজ এবং পাঁচ হাজার ইয়াবা উদ্ধার করেছে পুলিশ। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সদর হাসপাতালের মর্গে রয়েছে। এ ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি চলছে।টেকনাফ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক টিটু চন্দ্র শীল বলেন, পুলিশ গুলিবিদ্ধ দুইজনকে নিয়ে আসেন। তাদের একজনের শরীরে দুটি, আরেকজনের তিনটি গুলির আঘাত রয়েছে। আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে। 
বন্দুকযুদ্ধ, নিহত, টেকনাফ
রাজশাহীতে বিপদসীমার ৪৬ সেন্টিমিটার নিচে পদ্মার পানি
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২১:৫১
বিহার ও উত্তর প্রদেশের বন্যার পানি আসতে থাকায় রাজশাহীতে পদ্মার পানি বেড়েই চলেছে। মঙ্গলবার সকাল ৬ টায় পদ্মায় পানির উচ্চতা ছিলো ১৮ দশমিক ৪ মিটার। অর্থ্যাৎ বিপদসীমার মাত্র ৪৬ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে পানি প্রবাহিত হচ্ছে।সোমবার সকাল ৬টায় পানির উচ্চতা ছিল ১৭ দশমিক ৯০ মিটার। ২৪ ঘণ্টায় পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার।রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপাত্ত সংগ্রহকারী এনামুল হক এসব তথ্য জানিয়েছেন।রাজশাহী পানি উন্নয়ন বোর্ডের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী বলেন, পদ্মায় পানি বাড়লেও শহরে এখনো তা ঢুকবে না। শহরের সাথে সংযুক্ত সুইচগেটগুলো শিগগিরই বন্ধ করে দেয়া হবে। তবে চাঁপাইনবাবগঞ্জ, গোদাগাড়ী, পবা, বাঘা ও চারঘাটের চরাঞ্চলে বন্যায় ক্ষতির আশংকা আছে।এদিকে বাঘার চরাঞ্চলের ১১ টি স্কুল রোববার থেকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। সেখানে প্রায় দুই হাজার পরিবার পানিবন্দী রয়েছে।পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শাহরিয়ার আলম তার ফেসবুকে জানিয়েছেন, এসব পানিবন্দী মানুষকে সরিয়ে নিতে জেলা প্রশাসককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
পদ্মা, পানি
গাজীপুরে ডাকাতিকালে গৃহকর্তা খুন
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২২:৪৬
গাজীপুর সিটি করপোরেশনের দক্ষিণ সালনা এলাকায় একটি বাড়িতে ডাকাতিকালে গৃতকর্তাকে খুন করেছে ডাকাতেরা। সোমবার রাত ২টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। নিহত ব্যক্তির নাম আব্দুর রউফ (৬০)। তিনি স্থানীয় মসজিদ কমিটির সভাপতি ছিলেন ও কৃষি কাজ করতেন। এ সময় রউফের স্ত্রী মাজেদা বেগমকে কুপিয়ে জখম এবং স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে গেছে ডাকাতেরা।স্থানীয়রা জানায়, রাতে দক্ষিণ সালনা এলাকায় আব্দুর রউফের বাড়িতে একদল ডাকাত দেশিয় অস্ত্র নিয়ে হানা দেয়। এ সময় তারা গেটের তালা ও দরজা ভেঙে ভেতরে প্রবেশ করে ঘরের লোকজনকে বেঁধে ফেলে। এক পর্যায়ে তারা আব্দুর রউফকে পিটিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যা করে। এ সময় তার স্ত্রী মাজেদাকে কুপিয়ে জখম ও স্বর্ণালঙ্কার লুট করে নিয়ে যায় ডাকাতেরা। পরে তাদের চিৎকারে আশপাশের লোকজন এসে আহত মাজেদাকে উদ্ধার করে গাজীপুর শহীদ তাজউদ্দীন আহমদ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ভর্তি করে। গাজীপুর মেট্রোপলিটন সদর থানার ওসি মো. এজাজ সফি জানান, পূর্ব শত্রুতার জেরে দুর্বৃত্তরা আব্দুর রউফকে শ্বাসরোধে হত্যা করেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। খবর পেয়ে রাতে পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠিয়েছে। এ ব্যাপারে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
খুন, ডাকাতি, গাজীপুর
গুজরাটে সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ২১
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২৩:০৩ | আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ | ০৩:৫১
ভারতের গুজরাটে সড়ক দুর্ঘটনায় অন্তত ২১ জন নিহত হয়েছেন। এ দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন আরও ৫০ জন। সোমবার উত্তর গুজরাটের বনসকণ্ঠ এলাকায় একটি যাত্রীবাহী বাস উল্টে এ হতাহতের ঘটনা ঘটে। খবর এনডিটিভির।প্রবল বৃষ্টিতে রাস্তা পিচ্ছিল হওয়ায় বাসের চালক নিয়ন্ত্রণ হারান। বাসটিতে ৭০ জন যাত্রী ছিলেন বলে জানিয়েছে পুলিশ। সব যাত্রীই একই গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। অম্বাজী মন্দির থেকে ফিরছিলেন তারা।পুলিশ জানিয়েছে, আহতদের দান্তা ও পানলপুর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আহতদের মধ্যে ৩৫ জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক।ওই এলাকায় গত জুনে আরেক দুর্ঘটনায় নয়জনের মৃত্যু হয়। এ দুর্ঘটনায় শোক জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। টুইটারে তিনি বলেন, দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবরে আমি খুবই শোকাহত। নিহতদের স্বজনদের প্রতি আমি সমবেদনা জানাই। আহতদের পাশে থেকে সব ধরনের সাহায্য করছে স্থানীয় প্রশাসন। তাদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।রাজ্য ও স্থানীয় প্রশাসনের সঙ্গে এ নিয়ে কথা বলেছেন বলে জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ। টুইটারে তিনি লিখেছেন, গুজরাটের বাস দুর্ঘটনায় মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি গভীরভাবে শোকাহত। আমি স্থানীয় ও রাজ্য প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলেছি, প্রয়োজনীয় সব ব্যবস্থা করছে তারা। আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি।
সড়ক দুর্ঘটনা, নিহত
বন্যার পানিতে ‘মৎস্যকন্যা’ সেজে ফটোশুট
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২৩:২০
বন্যার পানিতে ভেসে গেছে ভারতের বিহারের রাজধানী পাটনার অনেক বাড়ি ও হাসপাতাল। প্রায় বুক সমান পানি বহু এলাকায়। ফলে সপ্তাহান্তে শহরের জনজীবন কার্যত অবরুদ্ধ হয়ে যায়। এমন পরিস্থিতিতে মঙ্গলবার বন্যাবিধ্বস্ত পাটনার রাস্তায় দেখা যায় এক তরুণীর ফটোশুট।তরুণীর নাম অদিতি সিংহ। ‘ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি'র ছাত্রী অদিতির ওই বৃষ্টিনিমগ্ন পাটনায় তোলা ছবি ইতোমধ্যে ভাইরাল হয়েছে। ইনস্টাগ্রাম ও ফেসবুকে ছবিগুলো শেয়ার করেছেন ফটোগ্রাফার সৌরভ অনুজ। খবর এনটিভিরওই ছবির সিরিজের নাম ‘মারমেইড ইন ডিজাস্টার'। লাল পোশাকে মৎস্যকন্যার ভূমিকায় অদিতি। সৌরভ অবশ্য জানিয়ে দেন, এই ছবির উদ্দেশ্য কেবল পাটনার বন্যা বিপর্যয়কে তুলে ধরা।তিনি ফেসবুকে লেখেন, ফোটোশুট কেবল পাটনার বর্তমান পরিস্থিতিকে তুলে ধরবার জন্য করা হয়েছে। এটাকে ভুল ভাবে নেবেন না।ইনস্টাগ্রামে ছবিগুলো ১০,০০০ লাইক পেয়েছে। পাশাপাশি পেয়েছে মিশ্র প্রতিক্রিয়া। কেউ কেউ বলছেন ছবিগুলো বন্যার্তদের জন্য অপমানজনক।অনেকেই পাটনার বর্তমান পরিস্থিতিকে তুলে ধরার জন্য সৌরভ ও অদিতিকে ধন্যবাদ দিয়েছে। কিন্তু অনেকেই দাবি করেন, এখানে বন্যাকে কেবল পটভূমি হিসেবে ব্যবহার করে তাকে রোমান্টিকভাবে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে নিজেদের স্বার্থে।ফেসবুকে একজন লেখেন, ফটোশুট হয়ে গেলে বিপর্যস্ত কাউকে সাহায্য করুন। অন্য আর একজন লেখেন, আপনারা প্রাকৃতিক বিপর্যয়কে রোম্যান্টিসাইজ করছেন।আবার অনেকে একে সমর্থনও করেছেন। একজন লিখেছেন, কনসেপ্টটা দারুণ। কেন সবাই এই ছবি দেখে ক্ষুব্ধ হচ্ছেন? অন্ধ আবেগ নিয়ে সমালোচনা করবেন না।
ভারত, বন্যা, ফটোশুট
পাবনা ও কুষ্টিয়ায় পদ্মার পানি বিপদসীমার ওপরে
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২৩:৫৩ | আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ | ০৪:০৫
পাবনা ও কুষ্টিয়ায় পদ্মা নদীর পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে দুই জেলার নিম্নাঞ্চলের বহু মানুষ পানিবন্দি হয়ে পড়েছেন, তলিয়ে গেছে জমির ফসল। পাবনা পানি উন্নয়ন বোর্ড হাইড্রোলজি বিভাগের (উত্তরাঞ্চলীয়) নির্বাহী প্রকৌশলী কেএম জহিরুল হক জানান, গত ২৪ ঘণ্টায় পদ্মার পাকশী হার্ডিঞ্জ ব্রিজ পয়েন্টে পানি বেড়েছে ১৪ সেন্টিমিটার। আর মঙ্গলবার সকাল ১০টায় বিপদসীমা ১৪ দশমিক ২৫ সেন্টিমিটার অতিক্রম করেছে। এর আগে সকাল ৯টার পরিমাপ অনুযায়ী, বিপদসীমার এক সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল পানি।পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় ঈশ্বরদী উপজেলার সাঁড়া, পাকশী, সাহাপুর ও লক্ষীকুন্ডা ইউনিয়নের প্রায় ১ হাজার হেক্টর জমির ফসল তলিয়ে গেছে। এতে আবাদ নিয়ে দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব এলাকার কৃষকরা। কৃষকরা জানান, আর দু-একদিন এভাবে পানি বাড়তে থাকলে পদ্মার চরে আবাদ করা বাকি জমির ফসলও তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।পাবনা জেলা প্রশাসক কবীর মাহমুদ সমকালকে বলেন, পদ্মার পানি বিপদসীমা অতিক্রম করার আগে থেকেই পাবনা জেলা প্রশাসন সতর্ক দৃষ্টি রাখছে। ইতোমধ্যে স্থানীয় প্রশাসনের মাধ্যমে নদীরপাড় এলাকার এবং ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকদের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে। যখন যেভাবে প্রয়োজন প্রশাসন তখন সেখানে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।এদিকে পানি বৃদ্ধির ফলে কুষ্টিয়ার দৌলতপুর উপজেলার রামকৃষ্ণপুর, চিলমারির পর ফিলিপনগর ও মরিচা ইউনিয়নের কিছু এলাকা প্লাবিত হয়েছে। পাশাপাশি কুমারখালী উপজেলার শিলাইদহ ইউনিয়নের কোমরকান্দি গ্রামে ভাঙন দেখা দিয়েছে।পদ্মায় পানি বাড়ায় গড়াই নদীতে পানি বাড়ছে প্রতিনিয়ত। জিকে ঘাট ছাড়াও বড় বাজার এলাকার বেড়িবাঁধের পাশে বেশ কিছূ ঘরবাড়িতে পানি ঢূকে পড়েছে। অনেকে বাড়িঘর ছেড়ে উঁচু স্থানে আশ্রয় নিয়েছেন। পানি বাড়তে থাকলে কুষ্টিয়া রক্ষা বাঁধসহ অন্যান্য স্থাপনা ঝুঁকিতে পড়তে পারে বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে। ভাঙন ঠেকাতে দ্রুত জিও ব্যাগ ফেলার প্রস্তুতি নিচ্ছে তারা।পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী পীযুষ কৃষ্ণ কুন্ডু বলেন, পানি এই মুহূর্তে বিপদসীমার কয়েক সেন্টিমিটার উপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এতে করে দৌলতপুর উপজেলার কয়েকটি ইউনিয়নের পর ভেড়ামারা উপজেলার মোসলেমপুরে পানি ঢুকছে। এছ্ড়া কুষ্টিয়া শহর, কুমারখালী ও খোকসার কিছু এলাকায় পানি প্রবেশ করে ক্ষয়ক্ষতি বাড়তে পারে।জেলা প্রশাসক মো. আসলাম হোসেন বলেন, নদীর পানির উচ্চতা বাড়ায় নতুন নতুন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করে প্রতিনিয়ত রিপোর্ট পাঠানো হচ্ছে। সরকারের উচ্চ পর্যায় থেকে প্রতি ঘণ্টায় বন্যা পরিস্থিতি মনিটরিং করা হচ্ছে। আমাদের একাধিক টিম ঘটনাস্থলে আছে। পর্যাপ্ত ত্রাণ প্রস্তুত রয়েছে। আরও ত্রাণ প্রয়োজন হলে আসবে।উল্লেখ্য, দীর্ঘ ১৬ বছর পর বিপদসীমা অতিক্রম করলো পদ্মার পানি। সর্বশেষ ২০০৩ সালে এই পয়েন্টে পানি বিপদসীমা অতিক্রম করেছিল।  
পাবনা, পদ্মার পানি
জয়পুরহাটে পুকুর থেকে দুই শিশুর মরদেহ উদ্ধার
প্রকাশ: ৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ | ২৩:৫৫
জয়পুরহাটে দুই শিশু কন্যার মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার সকালে পাঁচবিবি উপজেলার পূর্ব উঁচনা গ্রামের একটি পুকুর থেকে তাদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহতরা হলো-পাঁচবিবি উপজেলার উচনা গ্রামের রুবেল হোসেনের মেয়ে মরিয়ম আক্তার (৫) ও মোকলেছার রহমানের মেয়ে মুনিরা ভারভীন  (৫)। পাঁচবিবি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্ত মনসুর রহমান জানান, আপন চাচাতো বোন মরিয়ম আক্তার ও  মুনিরা ভারভীন সোমবার বিকেলে উপজেলার পূর্ব উঁচনা গ্রামের এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে দাওয়াত খেয়ে বাড়ি ফিরে না আসায় পরিবারের সদস্যরা অনেক খোঁজাখুঁজি করেন। পরদিন মঙ্গলবার সকালে প্রতিবেশীরা একটি পুকুরে দুই শিশুর মরদেহ দেখে পুলিশকে খবর দেন। খবর পেয়ে পুলিশ মরদেহ উদ্ধার করে। 
জয়পুরহাট, শিশু
কটিয়াদীতে বাসচাপায় আইনজীবী নিহত, সড়ক অবরোধ
প্রকাশ: ০১ অক্টোবর ২০১৯ | ০০:২৩ | আপডেট: ০১ অক্টোবর ২০১৯ | ০২:১৩
কিশোরগঞ্জের কটিয়াদী উপজেলার ভৈরব-কিশোরগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কে একটি মোটরসাইকেলকে যাত্রীবাহী বাস চাপা দিলে শাহানশাহ (৩০) নামে এক আইনজীবী নিহত হয়েছেন। মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৯টার দিকে কটিয়াদী উপজেলার মধ্যপাড়া বাজার এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। খবর পেয়ে এলাকাবাসী বাসটি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে এবং মহা সড়কটি অবরোধ করে রাখে। কটিয়াদী থানার ও হাইওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ এক ঘণ্টা চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। নিহত শাহানশাহ কটিয়াদী উপজেলার বনগ্রাম ইউনিয়নের ঘিলাকান্দি গ্রামের ফারুকে আজমের ছেলে ও কিশোরগঞ্জ আদালতের আইনজীবী।দুর্ঘটনার খবর পেয়ে অনন্যা সুপার বাসটি ভাংচুর করে এলাকাবাসী। ছবি: সমকালস্থানীয়রা জানান, মঙ্গলবার সকালে বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে করে কিশোরগঞ্জ কোর্টের উদ্দেশ্যে রওনা দেন শাহানশাহ। পথে মহাসড়কের মধ্যপাড়া নামক স্থানে অনন্যা সুপার নামের যাত্রীবাহী বাস মোটরসাইকেলটিকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান তিনি। এ খবরে এলাকাবাসী বাসটি ভাংচুর ও অগ্নিসংযোগের চেষ্টা করে এবং মহা সড়কটি অবরোধ করে রাখে। পরে পরিবহনের মালিক সমিতির নেতারা ঘটনাস্থলে এসে এ ঘটনায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার আশ্বাস দেয়। খবর পেয়ে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আব্দুল ওয়াহাব আইন উদ্দিন ও যুব মহিলা লীগ নেত্রী তানিয়া সুলতানা হ্যাপীও ঘটনাস্থলে যান। এরপর কটিয়াদী থানার ও হাইওয়ে ফাঁড়ির পুলিশ এক ঘণ্টা চেষ্টা করে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। হাইওয়ে ফাড়িঁর ইন চার্জ নাছির উদ্দিন মজুমদার বলেন, ঘটনার পর চালক দ্রুত পালিয়ে যায়। বাসটি আটক করা হয়েছে।
সড়কে মৃত্যু, সড়ক দুর্ঘটনা, কটিয়াদী
README.md exists but content is empty. Use the Edit dataset card button to edit it.
Downloads last month
0
Edit dataset card