title
stringlengths
1
251
url
stringlengths
31
281
text
stringlengths
0
785k
বাংলা ভাষা
https://bn.wikipedia.org/wiki/বাংলা_ভাষা
প্রধান পাতা
https://bn.wikipedia.org/wiki/প্রধান_পাতা
22px|alt=নির্বাচিত নিবন্ধ|link=উইকিপিডিয়া:নির্বাচিত নিবন্ধ|নির্বাচিত নিবন্ধ নির্বাচিত নিবন্ধ 22px|alt=আপনি জানেন কি?|link=উইকিপিডিয়া:আপনি জানেন কি|আপনি জানেন কি? আপনি জানেন কি... 22px|alt=ভালো নিবন্ধ|link=উইকিপিডিয়া:ভালো নিবন্ধ|ভালো নিবন্ধ ভালো নিবন্ধ 22px|alt=নির্বাচিত ছবি|link=উইকিপিডিয়া:আজকের নির্বাচিত ছবি|আজকের নির্বাচিত ছবি আজকের নির্বাচিত ছবি বিষয় অনুযায়ী বাংলা উইকিপিডিয়া 22px|alt=সম্পর্কিত সংস্থা|link= সম্পর্কিত সংস্থা 25px|alt=অবদানকারীর জন্য পাঠ্য|link= অবদানকারীর জন্য পাঠ্য উইকিপিডিয়ার সহপ্রকল্প অন্যান্য ভাষায় উইকিপিডিয়া
বাংলাদেশ
https://bn.wikipedia.org/wiki/বাংলাদেশ
সুমন চট্টোপাধ্যায়
https://bn.wikipedia.org/wiki/সুমন_চট্টোপাধ্যায়
REDIRECTকবীর সুমন
দুর্গা
https://bn.wikipedia.org/wiki/দুর্গা
দুর্গা (; অর্থাৎ "যিনি দুর্গতি বা সংকট থেকে রক্ষা করেন"; এবং "যে দেবী দুর্গম নামক অসুরকে বধ করেছিলেন")বাঙ্গালা ভাষার অভিধান, প্রথম ভাগ, জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাস, সাহিত্য সংসদ, কলকাতা, ১৯৮৬ হলেন হিন্দু দেবী পার্বতীর এক উগ্র রূপ। হিন্দু সংস্কৃতিতে তিনি জনপ্রিয় এক দেবী। তাঁকে আদ্যাশক্তির রণরঙ্গিনী এক মহাদেবীর রূপ বলে মান্য করেন। তিনি চণ্ডিকা, যোগমায়া, অম্বিকা, বৈষ্ণবী, মহিষাসুরসংহন্ত্রী, নারায়ণী, মহামায়া, কাত্যায়নী, দাক্ষায়ণী, অদ্রিজা, নগনন্দিনী, সিংহবাহিনী, শারদা, আনন্দময়ী ইত্যাদি নামেও পরিচিতা। দুর্গার বাহুসংখ্যা অনেক। তাঁর সহস্রভুজা, ত্রিংশতিভুজা, বিংশতিভুজা, অষ্টাদশভুজা, ষোড়শভুজা, দশভুজা, অষ্টভুজা ও চতুর্ভুজা মূর্তির উল্লেখ পুরাণ গ্রন্থাদিতে পাওয়া যায় বা বিভিন্ন স্থাপত্য-ভাস্কর্যে দেখা যায়। তবে দশভুজা রূপটিই সমধিক জনপ্রিয়। তাঁর বাহন সিংহ (উত্তর ও পশ্চিমভারতে আঞ্চলিকভাবে বাঘ)। মহিষাসুরমর্দিনী-মূর্তিতে তাঁকে মহিষাসুর নামে এক অসুরকে বধরত অবস্থায় দেখা যায়। তাঁর অনেক রূপ, যার মধ্যে কালী রূপটি অন্যতম জনপ্রিয়‌। সনাতন ধর্মে দেবী দুর্গা পরমা প্রকৃতি ও সৃষ্টির আদি কারণ।<ref name="ReferenceA">পৌরাণিকা, প্রথম খণ্ড, অমলকুমার মুখোপাধ্যায়, ফার্মা কেএলএম প্রাইভেট লিমিটেড, কলকাতা, ২০০১</ref> তিনি শিবের স্ত্রী পার্বতীর উগ্র রূপ, কার্তিক ও গণেশের জননী, এবং কালীর অন্যরূপ। বাংলা মঙ্গলকাব্য গুলোতে এবং আগমনী গানে দুর্গারূপে শিবজায়া হিমালয়দুহিতা পার্বতীর সপরিবারে পিতৃগৃহে অবস্থানের আনন্দময় দিনগুলোর (দুর্গাপূজা) এবং তাঁর বিবাহিত জীবনের অপূর্ব বর্ণনা পাওয়া যায়। মহাদেবী দেবতাদের অনুরোধে দুর্গম অসুরকে বধ করেন তাই দেবী পার্বতী দুর্গা নামে অভিহিত হন। দুর্গার আরাধনা বাংলা (পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ), আসাম, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড এবং বিহারের কোনো কোনো অঞ্চলে প্রচলিত। ভারতের অন্যত্র দুর্গাপূজা মূলত নবরাত্রি ব্রত রূপে উদযাপিত হয়। বছরে দুইবার দুর্গোৎসবের প্রথা রয়েছে – আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষে শারদীয়া এবং চৈত্র মাসের শুক্লপক্ষে বাসন্তী দুর্গাপূজা। সম্ভবত খ্রিস্টীয় দ্বাদশ-ত্রয়োদশ শতাব্দীতে বাংলায় দুর্গোৎসব প্রবর্তিত হয়। জনশ্রুতি আছে, রাজশাহীর তাহিরপুরের রাজা কংসনারায়ণ প্রথম সাড়ম্বরে শারদীয়া দুর্গাপূজার সূচনা করেছিলেন এবং তারপর নেত্রকোনা জেলার, মেন্দিপুর গ্রামের মঠবাড়িতে দূর্গা পূজার সূচনা হয়। দুর্গা নামের উৎপত্তি থাম্ব|মহিষাসুরমর্দিনী-দুর্গা, কালীঘাট পটচিত্র, ১৮৮০ দেবীভাগবত পুরাণ অনুসারে হিরণ্যাক্ষ পুত্র রুরুর বংশধর দুর্গম সমুদ্র মন্থনকালীন অসুরদের বঞ্চনা তথা তার পিতৃহত্যার প্রতিশোধ কামনায় ব্রহ্মার তপস্যা করে। সেই কঠোর সাধনায় সন্তুষ্ট ব্রহ্মার কাছে দুর্গম এই বর প্রার্থনা করে যে তাকে এমন এক নারী বধ করবেন যিনি অনাবদ্ধকে আবদ্ধ করতে পটিয়সী। বরলাভের অহংকারে মত্ত দুর্গম এর পর শুরু করে চরম বিশৃঙ্খলা, মাৎস্যন্যায়। তার অত্যাচার আর ধ্বংসলীলায় ত্রিভুবন বিধ্বস্ত। ক্ষমতা আর বিজয়গর্বে মত্ত অসুর এবার চতুর্বেদকে হস্তগত করলে সৃষ্টির ভারসাম্য রক্ষায় দেবী মহামায়া এক দশভুজারূপী মঙ্গলময়ী দেবী রূপে আবির্ভূতা হন আর দুর্গমাসুরের বিরুদ্ধে যুদ্ধঘোষণা করেন। বিন্ধ্যাচলে ১০ দিন ব্যাপী ঘোরযুদ্ধে দেবী ও তাঁর অংশোদ্ভূতা গুহ্যকালী, ছিন্নমস্তা, ত্রিপুরা, ভৈরবী প্রভৃতি দেবীগণ দুর্গমাসুরের কোটি সৈন্যকে নিধন করেন। এরপর দেবী দুর্গমাসুরকে সুতীক্ষ্ণ শূলের আঘাতে বধ করেন এবং চতুর্বেদ ও সকল মন্ত্র উদ্ধার করেন। দেবী তাই সর্বমন্ত্রময়ী। ক্ষমাশীলা পরমাজননী দেবী এরপর অনুতাপদগ্ধ দুর্গমাসুরকে অদ্বৈত ব্রহ্মের জ্ঞান প্রদান করে মোক্ষলাভ করান। দেবী দুর্গা স্বয়ং সচ্চিদানন্দময়ী পরব্রহ্মস্বরূপা আদ্যাশক্তি মহামায়া। যে সময় বা কাল সৃষ্টিতে একমাত্র আবদ্ধ নয়,যে কাল চিরন্তন সত্য, সেই কালকে পিষ্ট করেন মহাকাল শিব আর মহাকালকে পদতলে রেখেছেন দেবী মহামায়া। তিনি পরমাপ্রকৃতি; দেবী ভিন্ন শিব কেবল জড় বস্তু , দেবীর শক্তিতেই ব্রহ্মা সৃজন, বিষ্ণু পালন এবং রুদ্র সংহার করেন। মহিষাসুরমর্দিনী চণ্ডী ও দুর্গতিনাশিনী দুর্গাকে এক অভেদ মূর্তিকল্পে প্রতিষ্ঠিতা। নানা রূপে দেবী দুর্গা মূলত শক্তি দেবী। ঋগ্বেদে দুর্গার বর্ণনা নেই, তবে ঋগ্বেদোক্ত দেবীসূক্তকে দেবী দুর্গার সূক্ত হিসাবেই মান্যতা দেওয়া হয়। দেবী দুর্গা নির্গুণ অবস্থায় এই জগৎসংসারে বিরাজ করেন। তার জন্ম হয়না, আবির্ভাব ঘটে। দুর্গা সপ্তশতী তে বর্ণিত আছে, যে মহাশক্তি ব্রহ্মার ব্রহ্মত্ব, শিবের শিবত্ব, বিষ্ণুর বিষ্ণুত্ব প্রদান করেছেন, সেই দেবী দেবতাদের সমষ্টিভূত তেজপুঞ্জ থেকে স্বরূপ ধারণ করেন। দুর্গার বিশেষ আলোচনা ও পূজাবিধি তন্ত্র ও পুরাণেই প্রচলিত। যেসকল পুরাণ ও উপপুরাণে দুর্গা বা দেবী সংক্রান্ত আলোচনা রয়েছে সেগুলো হল: মৎস্যপুরাণ ,মার্কণ্ডেয় পুরাণ, দেবীপুরাণ, বামনপুরাণ, কালিকাপুরাণ, স্কন্দপুরাণ, বরাহপুরাণ, শিবপুরাণ ও দেবী ভাগবত। তিনি জয়দুর্গা, জগদ্ধাত্রী, গন্ধেশ্বরী, বনদুর্গা, চণ্ডী, নারায়ণী, কালী, গৌরী, উমা, মহাদুর্গা, অগ্নিদুর্গা, শূলিনী দুর্গা, সিন্ধুদুর্গা, মূলা দুর্গা, মহামায়া, মহিষমর্দিনী, চামুণ্ডা প্রভৃতি নামে ও রূপেও পূজিতা হন। তিনিই জগদীশ্বরী, আপন মহিমায় দ্যাবাপৃথিবীতে পরিব্যাপ্ত হয়ে আছেন প্রতিটি কণায়। তিনি ঘটন-অঘটন পটিয়সী, দুর্গা দুর্গতিনাশিনী। তিনিই জগতকে চালান ও প্রতিপালন করেন জগদ্ধাত্রী রূপে, আবার প্রলয়কালে তিনিই কালিকা রূপে জগৎকে গ্রাস করেন। বঙ্গ দেশে এবং উৎকলে এই দেবীকে নবপত্রিকার মাধ্যমে নটার রূপকে পূজা করা হয়। যা অনেকাংশে কলা বউ নামে পরিচিত। যদিও কলা বউটা লোক ভাষায় পরিচিত যার কোন পুরাণগত ব্যাখ্যা নেই। thumb|চন্দনকাঠের দুর্গা মূর্তি, মুর্শিদাবাদ থেকে প্রাপ্ত, বর্তমানে ভারতীয় জাদুঘর, কলকাতায় রক্ষিত আছে দেবী দুর্গা শাক্তমতে সর্বোচ্চ আরাধ্য দেবী, বৈষ্ণব মতে তাকে ভগবান বিষ্ণুর অনন্ত মায়া হিসাবে আখ্যা দেওয়া হয় এবং শৈবমতে দুর্গাকে শিবের অর্ধাঙ্গিনী পার্বতী । বৈদিক সাহিত্যে দুর্গার উল্লেখ পাওয়া যায়। কেনোপনিষদে বর্ণিত উমা(পার্বতী) হৈমবতীকে দুর্গা হিসাবেই আখ্যায়িত করা হয়েছে। ভাগবতে শ্রীকৃষ্ণের যোগমায়াকে দুর্গার একটি স্বরূপ আখ্যা দেওয়া হয়েছে যিনি হরির সহায়িকা শক্তি তথা শিবভক্তিপ্রদায়িনী। এইগুলো ছাড়াও দুর্গাদেবীর বর্ণনা মহাভারতের বিরাট পর্ব ও অন্যান্য পুরাণে পাওয়া যায়। দেবী দুর্গার ভিন্ন ভিন্ন অবতার সমূহ হল: কালিকা, নন্দা, ভ্রামরী, শাকম্ভরী, রক্তদন্তিকা, কৌশিকী, ভীমা, উগ্রচণ্ডা, ভদ্রকালী, কাত্যায়নী, শান্তা দুর্গা, অজিতা, অপরাজিতা ইত্যাদি। ভারতীয় উপমহাদেশের বাইরে থাম্ব|দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেবী দুর্গা, বাম থেকে: ৭ম-৮ম শতাব্দীর কম্বোডিয়া, ১০ম-১১দশ শতকের ভিয়েতনাম, ৮ম-৯ম শতাব্দীর ইন্দোনেশিয়া। জাপানি দুর্গা বা “জুনতেই ক্যানন (Juntei Kannon)” ১৮ হাতের দুর্গা রূপ। মহাযান পরিব্রাজকদের হাত ধরে দেবীর এই রূপ জাপানে পৌঁছায় ৭০০ শতাব্দীর কাছাকাছি। ভারতের দ্রাবিড় সভ্যতায় মাতৃতান্ত্রিক দ্রাবিড় জাতির মধ্যে মাতৃদেবীর পূজার প্রচলন ছিল। আর্য সভ্যতায় প্রাধান্য ছিল দেবতাদের। অনার্য সভ্যতায় প্রাধান্য ছিল দেবীদের, তারা পূজিত হতেন আদ্যাশক্তির প্রতীক রূপে। সিন্ধু সভ্যতায় তথা ব্যবিলনীয় সভ্যতায় উল্লেখ পাওয়া যায় এই মাতৃ পূজার। মাতৃপূজাকেন্দ্রিক সংস্কৃতির আদি পর্ব থেকে শুরু সিংহবাহিনী দেবীর পূজা। মেসোপটেমিয়ার সুমেরীয় সভ্যতায় খোঁজ পাওয়া যায় সিংহবাহিনী দেবী ইনান্না-র। কুশান সম্রাট কনিষ্কের মুদ্রাতেও খোঁজ পাওয়া যায় সিংহবাহিনী দেবী নানা-র। তুর্কমেনিস্তান ও আফগানিস্তানে প্রচলিত ছিল এই দেবীর মাহাত্ম্য। এখনও দেবী চণ্ডী “বিবি নানা” হিসেবে এইসব অঞ্চলে পূজিত হন। শাক্ত ঐতিহ্যের পুনর্জাগরণ হয় খ্রিষ্টীয় ৪০০ – ৫০০ অব্দের মধ্যবর্তী সময়ে। খ্রিষ্টীয় ৪০০ অব্দে রচিত হয় শাক্ত মহাপুরাণের অন্যতম গ্রন্থ দেবীমাহাত্ম্যম্।  এই সময়েই মার্কণ্ডেয় পুরাণের ৮১-৯৩ অধ্যায়গুলোর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয় এই গ্রন্থ। দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থেই প্রথম বিভিন্ন নারী দেবতা সংক্রান্ত নানান পুরাণ-কথা, সাংস্কৃতিক ও ধর্মতাত্ত্বিক উপাদানগুলি একত্রিত করা হয়। দেবীমাহাত্ম্যম্ গ্রন্থে বৈদিক পুরুষতান্ত্রিক দেবমণ্ডলীর সঙ্গে সম্ভবত খ্রিষ্টপূর্ব নবম অব্দ থেকে বিদ্যমান নৃতাত্ত্বিক মাতৃপূজাকেন্দ্রিক সংস্কৃতির এক সম্মিলনের প্রয়াস লক্ষিত হয়। এর পরবর্তী হাজার বছর এই ঐতিহ্য ছড়িয়ে পড়ে দক্ষিণ ও পূর্ব এশিয়ার বিভিন্ন দেশে। মহাযান বৌদ্ধধর্মের হাত ধরে দেবী চণ্ডীর মাহাত্ম্য ছড়িয়ে পড়ে বাংলাদেশ, চীন, জাপান, ভিয়েতনাম, কোরিয়া, সিঙ্গাপুর, তাইওয়ান, নেপাল, শ্রীলঙ্কা, তিব্বত, ভুটান, মালয়েশিয়া ও মঙ্গোলিয়ায়। কম্বোডিয়া আর ইন্দোনেশিয়া দেবী চণ্ডীর মাহাত্ম্য পূজিত হতে শুরু করে হিন্দু ধর্মের প্রসারের সাথে। অ্যাংকর যুগের (১০১০ শতাব্দের) পূর্বে কম্বোডিয়ায় মহিষাসুরমর্দিনীর পূজার প্রচলন ছড়িয়ে পরে হিন্দুধর্মের হাত ধরে। এই সময়ের যে দুর্গা মূর্তিগুলি কম্বোডিয়া থেকে উদ্ধারকমত হয়েছে, অধিকাংশ চতুর্ভুজা এবং মহিষাসুরমর্দিনী। মূর্তিগুলির বৈশিষ্ট্যাবলি যে এখানে মহিষাসুরমর্দিনী দুর্গা বিষ্ণুর মতো চতুর্ভুজা এবং শঙ্খ, চক্র, গদা ও পদ্ম ধারণকারী। জাভা ও ইন্দোনেশিয়ার অন্যান্য অংশ থেকে উদ্ধার হয়েছে অনেক মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তির প্রত্নতাত্ত্বিকধ্বংসাবশেষ। এই মূর্তিগুলো মধ্যে প্রাচীনতম তারিখ অনুমান অষ্টম শতাব্দীর। ইন্দোনেশিয়ার সেন্ট্রাল জাভাতে রয়েছে নবম শতাব্দীর বিখ্যাত হিন্দু মন্দির প্রাম্বানান। এই মন্দিরে রয়েছে এক জগৎ বিখ্যাত মহিষাসুরমর্দিনী মূর্তি। এটি একটি ইউনেস্কো-স্বীকৃত বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান, ইন্দোনেশিয়ায় বৃহত্তম হিন্দু মন্দির, এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যতম বড় মন্দির প্রাঙ্গণ।১৫শ থেকে ১৬শ শতাব্দীর মধ্যে ইন্দোনেশিয়ায় মহিষাসুরমর্দিনীর পূজা সবচেয়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। ইসলামের আগমনের পর দুর্গার আরাধনা পাড়ি জমায় আরও পূর্বদিকে হিন্দু বালিতে। দুর্গাপূজা 160px|left|মা দুর্গা দুর্গাপূজা হল শক্তির অধিষ্ঠাত্রী পার্বতীদেবীর দুর্গা রূপের উপাসনার উৎসব। দুর্গাপূজা শরৎ (আশ্বিন) এবং বসন্ত (চৈত্র) ঋতুর শুক্লপক্ষে অনুষ্ঠিত হয়। মার্কণ্ডেয় চণ্ডী অনুযায়ী, দুর্গাপূজার প্রথম প্রচলন হয়েছিল বসন্ত ঋতুতে রাজা সুরথ এবং বৈশ্য সমাধি কর্তৃক। দেবী ভাগবত ও কালিকাপুরাণে উল্লেখ আছে, শরৎকালে শ্রীরামচন্দ্র দেবী পার্বতীর দুর্গতিনাশিনী দুর্গা রূপের পূজা করেছিলেন রাবণ বধের নিমিত্তে; এজন্য একে, ‘অকালবোধন’ও বলা হয়ে থাকে। পূর্ব ভারতের পশ্চিমবঙ্গ, অসম, বিহার, উড়িষ্যা, ঝাড়খণ্ডে দুর্গাপূজা বহুলভাবে উদ্‌যাপন করা হয়; উত্তর ভারতে এটি নবরাত্রি হিসাবে পালন করা হয়। ভারতীয় উপমহাদেশের একাধিক রাষ্ট্র দুর্গাপূজা পালন করে এবং বাংলাদেশের সংখ্যালঘু হিন্দুরাও সকলে দুর্গাপূজা পালন করে। সাধারণত আশ্বিন মাসের শুক্লপক্ষের ষষ্ঠ দিন তথা ষষ্ঠীর থেকে আরম্ভ করে দশমী পর্যন্ত হয়ে থাকে এই দুর্গোৎসব। এই পাঁচ দিন যথাক্রমে দুর্গা ষষ্ঠী, মহাসপ্তমী, মহাষ্টমী, মহানবমী ও বিজয়া দশমী নামে পরিচিত। এই পক্ষটিকে দেবীপক্ষ নামেও জানা যায়। পূর্ববর্তী অমাবস্যার দিন এই দেবীপক্ষের সূচনা হয়, একে মহালয়াও বলা হয়ে থাকে; আর পূর্ণিমার দিনটিকে লক্ষ্মী পূজার দিন হিসাবে গণ্য করা হয় । thumb|ঢাকার একটি মন্দিরে দেবী দুর্গার প্রতিমা। নাম ব্যুৎপত্তি হিন্দুশাস্ত্রে "দুর্গা" শব্দটিকে ব্যাখ্যা করতে গিয়ে বলা হয়েছে: অর্থাৎ, "দ" অক্ষরটি দৈত্য বিনাশ করে, উ-কার বিঘ্ন নাশ করে, রেফ রোগ নাশ করে, "গ" অক্ষরটি পাপ নাশ করে এবং অ-কার শত্রু নাশ করে। এর অর্থ, দৈত্য, বিঘ্ন, রোগ, পাপ ও শত্রুর হাত থেকে যিনি রক্ষা করেন, তিনিই দুর্গা।" অন্যদিকে শব্দকল্পদ্রুম বলেছে, "দুর্গং নাশয়তি যা নিত্যং সা দুর্গা বা প্রকীর্তিতা"। অর্থাৎ, যিনি দুর্গ নামে অসুরকে বধ করেছিলেন, তিনি সব সময় দুর্গা নামে পরিচিত।শব্দকল্পদ্রুম ৩।১৬৬৬; পূজা-বিজ্ঞান, স্বামী প্রমেয়ানন্দ, উদ্বোধন কার্যালয়, কলকাতা, ১৯৯৯, পৃষ্ঠা ৪৪ দেবী পার্বতী দেবগণের অনুরোধে ও শিবের আদেশে এক উগ্র রূপ ধারণ করে দুর্গম অসুর কে বধ করেন তাই তিনি দুর্গা নামে অভিহিত হন। প্রভাব ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনের সময় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত বন্দে মাতরম গানের পিছনে অনুপ্রেরণা দেবী হিসেবে দুর্গা, পরে ভারতের সরকারী জাতীয় গান। দুর্গা ভারতীয় জাতীয়তাবাদে উপস্থিত যেখানে ভারত মাতা অর্থাৎ ভারত মাতাকে দুর্গার একটি রূপ হিসাবে দেখা হয়। এটি সম্পূর্ণরূপে ধর্মনিরপেক্ষ এবং ভারতীয়দের জন্য মা এবং রক্ষক হিসাবে দুর্গার প্রাচীন আদর্শের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ। তিনি পপ সংস্কৃতি এবং জয় সন্তোষী মা- এর মতো ব্লকবাস্টার বলিউড সিনেমায় উপস্থিত রয়েছেন। ভারতীয় সেনাবাহিনী হিন্দুস্তানি বাক্যাংশ ব্যবহার করে যেমন "দুর্গা মাতা কি জয়!" এবং " কালীমাতা কি জয়!"। যে কোনও মহিলা যে ভাল এবং ন্যায়ের জন্য লড়াই করার জন্য একটি কারণ গ্রহণ করে তার মধ্যে দুর্গার আত্মা রয়েছে বলে বলা হয়। আরও দেখুন দুর্গাপূজা জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে দুর্গা পাদটীকা গ্রন্থপঞ্জি বাংলা/সংস্কৃত " শ্রী দেবী ভাগবত" মার্কণ্ডেয় পুরাণ ইংরেজি Durga Puja: Yesterday, Today and Tomorrow, Sudeshna Banerjee, Rupa and Co, Calcutta, 2004. () Hindu Goddesses: Vision of the Divine Feminine in the Hindu Religious Traditions, David Kinsley. () Grace and Mercy in Her Wild Hair : Selected Poems to the Mother Goddess, Ramprasad Sen (1720-1781). () Durga Puja Beginner, Swami Satyananda Saraswati, Devi Mandir, 2001. () "Chandi Path", Swami Satyananda Saraswati, Devi Mandir () "Chandi Path: Study of Chapter One", Swami Satyananda Saraswati, Devi Mandir () "Chandi Path: Study of Chapter Two", Swami Satyananda Saraswati, Devi Mandir () Offering Flowers, Feeding Skulls: Popular Goddess Worship in West Bengal, June McDaniel, Oxford University Press, 2004. () "Pronunciation and the Chandi Samputs", Swami Satyananda Saraswati, Devi Mandir () "Devi Gita", Swami Satyananda Saraswati, Devi Mandir () The Bond Between Women: A Journey to Fierce Compassion, China Galland, Riverhead Trade Publishing, U.S., 1999. Mahishasura Mardini Stotram'' (Prayer to the Goddess who killed Mahishasura), Sri Sri Sri Shankara Bhagavatpadacharya বহিঃসংযোগ 108 names of Durga Quelle Source: Durgāsaptaśatī বিষয়শ্রেণী:দুর্গাপূজা বিষয়শ্রেণী:পার্বতীর রূপ বিষয়শ্রেণী:হিন্দু দেবদেবী বিষয়শ্রেণী:দেবী মা বিষয়শ্রেণী:শাক্তধর্ম বিষয়শ্রেণী:যুদ্ধের দেবী বিষয়শ্রেণী:হিন্দু দেবী বিষয়শ্রেণী:লক্ষ্মী
আনন্দমঠ
https://bn.wikipedia.org/wiki/আনন্দমঠ
আনন্দমঠ ঊনবিংশ শতাব্দীর ঔপন্যাসিক বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় রচিত একটি বাংলা উপন্যাস। এর প্রকাশকাল ১৮৮২ খ্রিস্টাব্দ । ভারতবর্ষের স্বাধীনতা সংগ্রামে এর একটি বিশেষ ভূমিকা আছে। এই উপন্যাসটি ছাপার বিরূদ্ধে ব্রিটিশ সরকার আইন পাশ করে, তবে এর হস্তলিখিত গুপ্ত সংস্করণ জনগণের মাঝে ছড়িয়ে পড়ে। উপন্যাসটি মুসলমান-বিরোধী মতধারার জন্য বিতর্কিত। এই উপন্যাসের কাহিনী ১৭৭৩ খ্রিস্টাব্দে সংঘটিত উত্তরবঙ্গের ফকির-সন্ন্যাসী আন্দোলনের ওপর ভিত্তি করে রচিত। এই উপন্যাসেই বঙ্কিমচন্দ্র বন্দে মাতরম্‌ গানটি লেখেন। পরবর্তীকালে ভারতীয় স্বদেশপ্রেমীরা "বন্দে মাতরম" বাক্যটি জাতীয়তাবাদী শ্লোগান হিসাবে গ্রহণ করেন। এটিকে বাংলা ও ভারতীয় সাহিত্যের ইতিহাসে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপন্যাস হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কাহিনী উপন‍্যাসটির শুরু মহেন্দ্র এবং কল্যাণী নামে এক দম্পতির পরিচয় দিয়ে, যারা দুর্ভিক্ষের সময় খাবার ও জল ছাড়া তাদের গ্রাম পদচিহ্নে আটকে রয়েছে।  তারা তাদের গ্রাম ছেড়ে নিকটতম শহরে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে যেখানে বেঁচে থাকার ভাল সম্ভাবনা রয়েছে।  ঘটনা চলাকালীন, দম্পতি আলাদা হয়ে যায় এবং ডাকাতদের হাতে ধরা না পড়ার জন্য দৌড়াতে থাকে এবং এক পর্যায়ে নদীর তীরে চেতনা হারায়। সত্যানন্দ নামে একজন হিন্দু সন্ন্যাসী কল‍্যাণী ও তার শিশুপুত্রীকে তাঁর আশ্রমে নিয়ে যান এবং তিনি এবং অন্যান্য সন্ন্যাসীরা তার স্বামীর সাথে পুনরায় মিলন না হওয়া পর্যন্ত তার এবং তার সন্তানের যত্ন নেন। স্বামী মহেন্দ্র এই মুহূর্তে সন্ন্যাসীদের আশ্রমে যোগদান এবং মাতৃজাতির সেবা করার দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন।  কল্যাণী নিজেকে হত্যা করার চেষ্টা করে তাঁর স্বপ্ন অর্জনে সহায়তা দিতে চায়, যাতে তিনি পার্থিব কর্তব্য থেকে মুক্তি পান।  এই সময়ে সত্যানন্দ তার সাথে যোগ দেন তবে তিনি তাকে সাহায্য করার আগে তাঁকে ব্রিটিশ সেনারা গ্রেপ্তার করে, কারণ অন্যান্য অনেক সন্ন্যাসী ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহের সূত্রপাত করেছিলেন।  টেনে নিয়ে যাওয়ার সময় তিনি অন্য এক সন্ন্যাসীকে লক্ষ্য করেন যিনি তাঁর সন্ন্যাসীর পোশাকে ছিলেন না। সত্যানন্দ তাঁকে লক্ষ্য করে একটি গান করেন। অন্য সন্ন্যাসী গানটির অর্থ অনুধাবন করে কল্যাণী এবং শিশুপুত্রীটিকে উদ্ধার করে বিদ্রোহী সন্ন্যাসীদের আস্তানায় নিয়ে যান।  একই সাথে কল্যাণীর স্বামী মহেন্দ্রকেও ভিক্ষুরা আশ্রয় দিয়েছিলেন। কল‍্যাণী ও মহেন্দ্র আবার একত্রিত হয়।  বিদ্রোহীদের নেতা মহেন্দ্রকে ভারত-মাতার (মাদার ইন্ডিয়া) তিনটি মুখ দেখান যে পর পর তিনটি ঘরে তিন দেবীর পূজা করা হচ্ছে: জগদ্ধাত্রী, কালী ও দুর্গা। ধীরে ধীরে, বিদ্রোহী প্রভাব বৃদ্ধি পায় এবং তাদের সদস্যসংখ্যা বেড়ে যায়।  উৎসাহিত হয়ে তারা তাদের সদর দফতর একটি ছোট ইটের দুর্গে স্থানান্তরিত করে।  ব্রিটিশরা একটি বিশাল বাহিনী নিয়ে দুর্গ আক্রমণ করে।  বিদ্রোহীরা নিকটবর্তী নদীর উপর ব্রিজ অবরোধ করলেও আর্টিলারি তথা সামরিক প্রশিক্ষণের অভাব উপলব্ধি করে।  লড়াইয়ে ব্রিটিশরা সেতুর উপর থেকে কৌশলগত পশ্চাদপসরণ করে।  সন্ন্যাসীদের অপ্রস্তুত সেনা সামরিক অভিজ্ঞতার অভাব সত্ত্বেও ব্রিটিশদের ফাঁদে ফেলে।  ব্রিজটি বিদ্রোহীদের দ্বারা পূর্ণ হয়ে গেলে ব্রিটিশ আর্টিলারি গুলি চালিয়ে দেয় এবং অনেকে গুরুতর হতাহত হন। তবে কিছু বিদ্রোহী কিছু কামান দখল করে এবং আগুনটিকে ব্রিটিশ লাইনে ফিরিয়ে দেয়।  ব্রিটিশরা পিছিয়ে পড়তে বাধ্য হয়, বিদ্রোহীরা তাদের প্রথম যুদ্ধে জয়লাভ করে।  মহেন্দ্র এবং কল্যাণী বাড়ি ফিরে আসে। তাদের আবার বাড়ি তৈরির মধ্য দিয়ে গল্পটি শেষ হয়েছে। মহেন্দ্র বিদ্রোহীদের সমর্থন অব্যাহত রেখেছিলেন। এই উপন্যাসটিতে বন্দে মাতরম্ গানটি গাওয়া হয়েছে।  বন্দে মাতরমের অর্থ "মা, আমি তোমাকে প্রণাম করি মা"।  এটি বিংশ শতাব্দীতে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রেরণা জাগিয়ে তোলে এবং এর প্রথম দুটি স্তবক স্বাধীনতার পরে ভারতের জাতীয় গানে পরিণত হয়। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:বাংলা সাহিত্য বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষার উপন্যাস বিষয়শ্রেণী:বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের উপন্যাস বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষার ভারতীয় উপন্যাস বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় স্বাধীনতা আন্দোলনের সাহিত্য বিষয়শ্রেণী:ভারতের পটভূমিতে উপন্যাস বিষয়শ্রেণী:চলচ্চিত্রে গৃহীত ভারতীয় উপন্যাস বিষয়শ্রেণী:১৯শ শতাব্দীর ভারতীয় উপন্যাস
সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়
https://bn.wikipedia.org/wiki/সৌরভ_গঙ্গোপাধ্যায়
থাম্ব|লর্ডসে সৌরভের জার্সি সংরক্ষিত সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বা সৌরভ গাঙ্গুলী (; জন্ম ৮ জুলাই ১৯৭২) একজন প্রাক্তন ভারতীয় ক্রিকেটার এবং ভারতীয় জাতীয় ক্রিকেট দলের প্রাক্তন অধিনায়ক। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় জন্মগ্রহণ করেন ৮ই জুলাই, ১৯৭২ সালে, কলকাতার বেহালায় একটি প্রতিষ্ঠিত পরিবারে। তার বাবার নাম চণ্ডীদাস গঙ্গোপাধ্যায় ও মাতার নাম নিরুপা গঙ্গোপাধ্যায়। সৌরভ মূলত তার দাদার সাহায্যে ক্রিকেট জীবনে প্রতিষ্ঠিত হন। বাঁহাতি ক্রিকেটার সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় অদ্যাবধি ভারতের সফলতম টেস্ট অধিনায়ক বলে বিবেচিত হন; তার অধিনায়কত্বে ভারত ৪৯টি টেস্ট ম্যাচের মধ্যে ২১টি ম্যাচে জয়লাভ করে। ২০০৩ সালের ক্রিকেট বিশ্বকাপে তার অধিনায়কত্বেই ভারত ফাইনালে পৌঁছে যায়।Performance of India's Test Captains সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কেবলমাত্র একজন আগ্রাসী মনোভাবাপন্ন অধিনায়কই ছিলেন না, তার অধীনে যে সকল তরুণ ক্রিকেটারেরা খেলতেন, তাদের কেরিয়ারের উন্নতিকল্পেও তিনি প্রভূত সহায়তা করতেন।http://news.bbc.co.uk/sport3/cwc2003/hi/newsid_2870000/newsid_2870400/2870451.stmhttp://www.tribuneindia.com/2003/20031112/sports.htm একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটেও সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় বিশেষ খ্যাতিসম্পন্ন ক্রিকেটার। একদিনের ক্রিকেটে তার মোট রানসংখ্যা এগারো হাজারেরও বেশি। একদিনের ক্রিকেটে তার সাফল্য সত্ত্বেও ক্যারিয়ারের শেষদিকে একদিনের ক্রিকেটে তার স্থলে দলে তরুণ ক্রিকেটারদের নেওয়ার প্রবণতা দেখা যায়। ২০০৮ সালের ৭ অক্টোবর সৌরভ ঘোষণা করেন যে সেই মাসে শুরু হতে চলা টেস্ট সিরিজটিই হবে তার জীবনের সর্বশেষ টেস্ট সিরিজ। ২০০৮ সালের ২১ অক্টোবর সৌরভ তার সর্বশেষ প্রথম-সারির ক্রিকেট ম্যাচটি খেলেন। Retrieved 22 December. প্রারম্ভিক জীবন ৮ জুলাই, ১৯৭২ সালে, চন্ডীদাস ও নিরুপা গঙ্গোপাধ্যায় দম্পতির কনিষ্ঠ পুত্র সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় কলকাতার বেহালায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা, চন্ডীদাস গঙ্গোপাধ্যায় মুদ্রণ এর ব্যবসা ছিল এবং তিনি শহরের অন্যতম ধনী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন ছিলেন।সৌরভের শৈশবকাল অত্যন্ত সুখকর ছিল এবং তার ডাক নাম ছিল 'মহারাজা'। তার পিতা, চন্ডীদাস গঙ্গোপাধ্যায় দীর্ঘ অসুস্থতার পর ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৩ সালে ৭৩ বছর বয়সে মারা যান। কলকাতা শহরে বেশির ভাগ লোকের প্রিয় খেলা 'ফুটবল' ছিল এবং তার ফলে সৌরভও প্রাথমিকভাবে এই খেলায় আকৃষ্ট হয়েছিলেন। তবে খেলাধুলার প্রতি তার ভালবাসায় বাধ সাধল পড়াশুনো এবং তার মা ক্রিকেট বা কোনও খেলাধুলা পেশা হিসাবে গ্রহণের পক্ষে সৌরভকে খুব একটা সমর্থন করেননি। তবে ততক্ষণে তার বড় ভাই স্নেহাশিস ইতিমধ্যে বেঙ্গল ক্রিকেট দলের একজন প্রতিষ্ঠিত ক্রিকেটার ছিলেন। তিনি সৌরভের ক্রিকেটার হওয়ার স্বপ্নকে সমর্থন করেছিলেন এবং তাঁদের পিতাকে গ্রীষ্মের ছুটিতে সৌরভকে একটি ক্রিকেট কোচিং শিবিরে ভর্তি করতে বলেন, সেই সময় সৌরভ দশম শ্রেণিতে পড়াশোনা করছিলেন। ডানহাতি হওয়া সত্ত্বেও সৌরভ বাম হাতে ব্যাটিং করতে শিখেছিলেন যাতে তিনি তার ভাইয়ের ক্রিকেট সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারেন। ব্যাটসম্যান হিসাবে কিছু প্রতিশ্রুতি দেখানোর পরে, তাঁকে একটি ক্রিকেট একাডেমিতে ভর্তি করা হয়েছিল সাথে সাথে সৌরভের বাড়িতে একটি ইনডোর মাল্টিম-জিম এবং কংক্রিট উইকেট নির্মিত হয়েছিল যাতে তিনি এবং স্নেহাশিস ক্রিকেটের অনুশীলন করতে পারেন। দুই ভাই অনেকগুলি পুরানো ক্রিকেটের ম্যাচের ভিডিওগুলি দেখতেন, বিশেষত সৌরভের পছন্দ ছিল ডেভিড গাওয়ারের ভিডিওগুলি। ওড়িশার অনূর্ধ্ব ১৫ দলের বিপক্ষে সেঞ্চুরি করার পরে সৌরভকে তার স্কুল, সেন্ট জেভিয়ার্সের ক্রিকেট দলের অধিনায়ক করা হয়েছিল, যেখানে তার বেশ কয়েকজন সতীর্থ অভিযোগ করেছিলেন যে সৌরভ অধিনায়ক ছিল বলে তার অহংকার ছিল। কোনও এক সময় জুনিয়র দলের সাথে সফরকালে, সৌরভে দ্বাদশতম ব্যক্তি হিসাবে দলে থাকতে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন, কারণ তিনি মনে করেছিলেন যে খেলোয়াড়দের জন্য সরঞ্জাম এবং পানীয় সরবরাহ করার দায়িত্ব, তার কাজ নয়। তার কাছে তার দলীয় সতীর্থদের এমনভাবে সহায়তা কাজগুলির করা মানে হল তার সামাজিক মর্যাদা থাকবে না এবং তিনি এমন কাজগুলি করতে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। তবে তার খেলোয়াড়ীত্ব তাকে ১৯৮৯ সালে বাংলার হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে আত্মপ্রকাশের সুযোগ দিয়েছিল এবং একই বছরই তার ভাই বাংলার দল থেকে বাদ পড়েছিলেন। ক্রিকেট জীবন অধিনায়ক তিনি শুধু একজন খেলোয়াড়ই নন, একজন বিখ্যাত অধিনায়কও ছিলেন। তিনি তার ক্রিকেট জীবনে সর্বমোট ৩১১টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছেন এবং ১১,৩৬৩ রান সংগ্রহ করেছেন। পাশাপাশি তিনি ১১৩টি টেস্ট খেলেছেন ও ৭,২১২ রান সংগ্রহ করেছেন। ভারতকে তিনি ৪৯টি টেস্ট ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যার মধ্যে ভারত জিতেছিল ২১টি ম্যাচে। সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায় ভারতকে ১৪৬টি একদিনের আন্তজার্তিক ম্যাচে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন যার মধ্যে ভারত জিতেছিল ৭৬ টি ম্যাচে। তিনি ভারতের একজন মিডিয়াম পেসার বোলারও ছিলেন। তিনি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে ১০০টি এবং টেস্টে ৩২টি উইকেট দখল করেন। এছাড়া তিনি একদিনের আন্তর্জাতিকে ১০০টি ও টেস্টে ৭১টি ক্যাচ নিয়েছেন। ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে খেলার পর তিনি ক্রিকেট থেকে অবসর নেন। এরপরে ২০০৮, ২০০৯ ও ২০১০-এ আইপিএলে কলকাতা নাইট রাইডার্সের হয়ে খেলেন এবং ২০০৮ ও ২০১০-এ এই দলকে নেতৃত্ব দেন। ২০১১ সালে অনুষ্ঠিত আইপিএলের চতুর্থ সিজনে নিলামে তিনি অবিক্রীত থেকে গেলেও শেষ পর্যন্ত পুনে ওয়ারিয়র্সের দলের প্রতিনিধিত্ব করেন। বর্তমানে তিনি দিল্লি ডেয়ারডেভিলসের মেন্টর। অবসর পরবর্তী জীবন বর্তমানে সৌরভ গাঙ্গুলী সিএবি (CAB) এর সভাপতি এবং বিসিসিআই - উপদেষ্টা কমিটির সদস্য। সৌরভ আইএসএল ফুটবল দল অ্যাটলেটিকো দি কলকাতার (ATK) অন্যতম কর্ণধর। থাম্ব|কেরিয়ার পারফর্মেন্সের পরিসংখ্যান সৌরভ গাঙ্গুলী বর্তমানে ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশন অব বেঙ্গল-এর প্রেসিডেন্ট পদে দায়িত্ব পালন করছেন সেই সাথে তিনি ভারতের ক্রিকেট বোর্ডের প্রেসিডেন্ট। এর আগে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অন্যতম সফল এই অধিনায়ক বিসিসিআইয়ের টেকনিক্যাল কমিটির চেয়ারম্যান হিসেবে কাজ করেছেন। অভিনয় জি বাংলার জনপ্রিয় আপাতবাস্তব টেলিভিশন অনুষ্ঠান দাদাগিরিতে তিনি উপস্থাপক হিসেবে দীর্ঘদিন ধরে কাজ করে আসছেন। বকুল কথা জি বাংলার জনপ্রিয় ধারাবাহিকে তাকে দেখতে পাওয়া গিয়েছিল বকুলের আইডল হিসাবে৷ ২০১৮ সালে দূর্গা পূজার গান "জয় জয় দূর্গা মা" তে তাকে লক্ষ্য করা যায়। অধিনায়কত্বের পরিসংখ্যান ওয়ানডে ক্রিকেটে অধিনায়কত্ব পরিসংখ্যান মাঠ সময়কাল খেলার সংখ্যা জয় পরাজয় টাই ড্রনিজ মাঠে ২০০০-২০০৫ ২১ ১০ ৩ ০ ৮বিদেশের মাঠে ২০০০-২০০৫ ৫১ ২৪ ২৪ ০ ৩নিরপেক্ষ মাঠে ১৯৯৯-২০০৫ ৫৯ ৩৪ ২৩ ০ ২ সর্বমোট ১৯৯৯-২০০৫ ১৪৬ ৭৬ ৬৫ ০ ৫ পুরস্কার সৌরভ মোট ৩১টি আন্তর্জাতিক একদিনের ম্যাচে সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার পান। ওডিআই ম্যান অব দ্য ম্যাচ প্রতিপক্ষভেন্যুতারিখম্যাচ পারফরমেন্সফলাফলউৎস দক্ষিণ আফ্রিকা বাফেলো পার্ক, ইস্ট লন্ডন ফেব্রুয়ারি ৪,১৯৯৭ ৮৩ রান(৬x৪, ১x৬) হার বাংলাদেশ সিংহলিজ স্পোর্টস ক্লাব গ্রাউন্ড, কলম্বো জুলাই ২৪, ১৯৯৭ ৭৩* রান (৮x৪, ২x৬); ১টি ক্যাচজয় পাকিস্তান টরন্টো ক্রিকেট, স্কেটিং এবং কার্লিন ক্লাব সেপ্টম্বর ২, ১৯৯৭ ৩২ রান (৪x৪); ১টি ক্যাচ ও ১টি উইকেট জয় পাকিস্তান টরন্টো ক্রিকেট, স্কেটিং এবং কার্লিন ক্লাব সেপ্টেম্বর ১৮, ১৯৯৭ ২ রান ; ১টি ক্যাচ ও ৫টি উইকেট জয় পাকিস্তান টরন্টো ক্রিকেট, স্কেটিং এবং কার্লিন ক্লাব সেপ্টম্বর ২০, ১৯৯৭ ৭৩* রান (৮x৪, ১x৬); ২টি উইকেট জয় পাকিস্তান টরন্টো ক্রিকেট, স্কেটিং এবং কার্লিন ক্লাব সেপ্টম্বর ২১, ১৯৯৭ ৯৬ রান (৫x৪, ২x৬); ২টি উইকেট হার পাকিস্তান টরন্টো ক্রিকেট, স্কেটিং এবং কার্লিন ক্লাব সেপ্টম্বর ৩০, ১৯৯৭ ৮৯ রান (১১x৪);জয় পাকিস্তান জাতীয় স্টেডিয়াম,ঢাকা জানুয়ারী ১৮, ১৯৯৮ ১২৪ রান (১১x৪, ১x৬);জয় স্বাস্থ্য ২ জানুয়ারী ২০২১-এ, গাঙ্গুলি ব্যায়াম করার সময় বুকে ব্যথার অভিযোগ করেছিলেন এবং পরে তিনটি অবরুদ্ধ করোনারি ধমনীতে ধরা পড়েছিল যার ফলে একটি হালকা কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হয়েছিল। একই দিনে একটি ব্লকেজের জন্য তার প্রাথমিক এনজিওপ্লাস্টি করা হয়েছিল।Martin A (2020) Zak Crawley ready to stake his claim for England's No 3 berth against West Indies, The Guardian, 2020-06-25. Retrieved 2020-06-25. তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Cumulative Career Averages Fastest To Reach Multiples Sourav Ganguly News Articles বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:১৯৭২-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:জীবিত ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:ভারতের টেস্ট ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:টেস্ট ক্রিকেট অভিষেকে সেঞ্চুরি করা ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:ভারত জাতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিষয়শ্রেণী:ভারতের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:১৯৯৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:২০০৩ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:২০০৭ ক্রিকেট বিশ্বকাপের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:এসিসি এশীয় একাদশের একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:ল্যাঙ্কাশায়ারের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:গ্ল্যামারগনের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:নর্দাম্পটনশায়ারের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় ক্রিকেট ধারাভাষ্যকার বিষয়শ্রেণী:কলকাতা নাইট রাইডার্সের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:পুনে ওয়ারিয়র্স ইন্ডিয়ার ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:বঙ্গবিভূষণ প্রাপক বিষয়শ্রেণী:বাঙালি ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় হিন্দু বিষয়শ্রেণী:বাঙালি হিন্দু বিষয়শ্রেণী:ভারতের টেস্ট ক্রিকেট অধিনায়ক বিষয়শ্রেণী:মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাবের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় ক্রিকেট প্রশাসক বিষয়শ্রেণী:বাংলার ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:কলকাতা থেকে আগত ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:ক্রীড়ায় পদ্মশ্রী প্রাপক বিষয়শ্রেণী:ইন্ডিয়া গ্রিনের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:ভারতীয় ক্রীড়া নির্বাহী ও প্রশাসক বিষয়শ্রেণী:পূর্বাঞ্চলের ক্রিকেটার বিষয়শ্রেণী:অর্জুন পুরস্কার প্রাপক
শেখ হাসিনা
https://bn.wikipedia.org/wiki/শেখ_হাসিনা
শেখ হাসিনা ওয়াজেদ (জন্ম: ২৮ সেপ্টেম্বর ১৯৪৭) বাংলাদেশের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বাংলাদেশের একাদশ জাতীয় সংসদের সরকারদলীয় প্রধান এবং বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভানেত্রী। তিনি বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে দায়িত্ব পালন করা প্রধানমন্ত্রী। তিনি মোট ৮ বার সংসদ সদস্য (এমপি) নির্বাচিত হন। শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমানের কন্যা। তার রাজনৈতিক কর্মজীবন প্রায় চার দশকেরও বেশি সময়ব্যাপী বিস্তৃত। তিনি ১৯৮৬ থেকে ১৯৯০ ও ১৯৯১-১৯৯৫ পর্যন্ত বিরোধী দলের নেতা এবং ১৯৯৬-২০০১ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন এবং ১৯৮১ সাল থেকে তিনি আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন। ২০০৮ সালে জনগণের বিপুল ভোটে জয়ী হয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফিরে আসেন। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে একটি বিরোধীদলবিহীন নির্বাচনে তিনি তৃতীয়বারের মত প্রধানমন্ত্রী হন। নির্বাচনটি বিরোধীদল কর্তৃক বর্জিত এবং আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকদের দ্বারা সমালোচিত হয়েছিল। ২০১৮ সালের ডিসেম্বরে তিনি সহিংসতায় দুষ্ট ও বিরোধীদল কর্তৃক সাজানো নির্বাচন হিসেবে সমালোচিত একটি নির্বাচনে চতুর্থ মেয়াদে প্রধানমন্ত্রী হন। সর্বশেষ ২০২৪ সালের দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পঞ্চম মেয়াদে তিনি বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হন। শেখ হাসিনা বিশ্বের অন্যতম সর্বোচ্চ ক্ষমতাশালী ব্যক্তি হিসেবে বিবেচিত। ফোর্বস সাময়িকীর দৃষ্টিতে বিশ্বের সবচেয়ে ক্ষমতাধর ১০০ নারীর তালিকায় ২০২০ সালে তার অবস্থান ছিল ৩৯তম, ২০১৯ সালে তার অবস্থান ছিল ২৯তম, ২০১৮ সালে ২৬তম এবং ২০১৭ সালে ৩০তম। এছাড়া যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক ফরেইন পলিসি নামক সাময়িকীর করা বিশ্বব্যাপী শীর্ষ ১০০ বৈশ্বিক চিন্তাবিদদের তালিকায় শেখ হাসিনা জায়গা করে নিয়েছেন। তিনি বিশ্ব নারী নেত্রী পরিষদ-এর একজন সদস্য, যা বর্তমান ও প্রাক্তন নারী রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীদের একটি আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক। প্রারম্ভিক জীবন শেখ হাসিনা পূর্ব পাকিস্তানের টুঙ্গিপাড়ায় (বর্তমানে গোপালগঞ্জ জেলার টুঙ্গিপাড়া) ১৯৪৭ সালের ২৮শে সেপ্টেম্বর জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা বাংলাদেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি শেখ মুজিবুর রহমান এবং মাতা বেগম ফজিলাতুন্নেসা। তিনি পাঁচ ভাইবোনের মধ্যে সবার বড়। তিনি টুঙ্গিপাড়াতে বাল্যশিক্ষা নেন। ১৯৫৪ সাল থেকে তিনি ঢাকায় পরিবারের সাথে মোগলটুলির রজনী বোস লেনের বাড়িতে বসবাস শুরু করেন। পরে মিন্টো রোডের সরকারি বাসভবনে স্থানান্তরিত হন। ১৯৫৬ সালে তিনি টিকাটুলির নারীশিক্ষা মন্দির বালিকা বিদ্যালয়ে ভর্তি হন। ১৯৬১ সালের ১ অক্টোবর ধানমন্ডির ৩২ নম্বরের বাড়িতে থাকা শুরু করেন। ১৯৬৫ সালে তিনি আজিমপুর বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ম্যাট্রিক পাশ করেন। শেখ হাসিনা ১৯৭৩ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে থেকে স্নাতক ডিগ্রি সম্পন্ন করেন। বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকা অবস্থায় ১৯৬৭ সালে এম এ ওয়াজেদ মিয়ার সাথে তার বিয়ে হয় এবং ওয়াজেদ মিয়া ৯ মে, ২০০৯ তারিখে মৃত্যুবরণ করেন। তাদের সংসারে সজীব ওয়াজেদ জয় (পুত্র) ও সায়মা ওয়াজেদ পুতুল (কন্যা) নামে দুই সন্তান রয়েছেন। ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ রাতে শেখ মুজিবুর রহমানকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী গ্রেপ্তারের সময় তিনি ধানমণ্ডি ৩২ নম্বর রোডের বাসায় পিতার পাশেই ছিলেন। শেখ মুজিবের গ্রেপ্তারের পর তিনি মায়ের সঙ্গে ভাই-বোনদের নিয়ে বসবাস করতে থাকেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট এক সামরিক অভ্যুত্থানে তিনি ও তার বোন শেখ রেহানা বাদে পরিবারের সকল সদস্যকে হত্যা করা হয়। বোনদ্বয় সেইসময় পড়াশোনার জন্য পশ্চিম জার্মানিতে অবস্থান করছিলেন। এরপর তিনি ভারত, বেলজিয়াম সহ বিভিন্ন দেশে অবস্থান করতে থাকেন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব প্রদানের লক্ষ্যে তিনি ১৯৮১তে বাংলাদেশে স্থায়ীভাবে প্রত্যাবর্তন করেন। রাজনৈতিক জীবন বেগম বদরুন্নেসা সরকারি মহিলা কলেজের (সাবেক ইন্টারমিডিয়েট গভর্নমেন্ট গার্লস কলেজে) ছাত্রী থাকা অবস্থায় ছাত্ররাজনীতিতে সক্রিয় হন তিনি। ১৯৬৬ সালে ছয় দফা আন্দোলনে অংশ নেন এবং কলেজ ছাত্র সংসদের ভিপি নির্বাচিত হন। আওয়ামী লীগের সভানেত্রী আওয়ামী লীগ ১৯৮১ সালে সর্বসম্মতিক্রমে শেখ হাসিনাকে তার অনুপস্থিতিতে দলের সভাপতি নির্বাচিত করে। ছয় বছরের নির্বাসিত জীবন শেষ করে অবশেষে তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে দেশে ফিরে আসেন। বিরোধীদলীয় নেত্রী, ১৯৮৬-১৯৮৭ পরবর্তীকালে তিনি এবং তার দল এরশাদ বিরোধী দুর্বার আন্দোলন গড়ে তুলেন ও ১৯৯০ সালে অভিন্ন রাজনৈতিক আন্দোলনের মাধ্যমে এরশাদ সরকারকে ক্ষমতা থেকে পদত্যাগ করতে বাধ্য করেন। ১৯৯১-এর নির্বাচন নির্বাচনে আওয়ামী লীগ ৮৮ টি সংসদীয় আসন লাভ করে এবং প্রধান বিরোধী দল হিসেবে আত্ম প্রকাশ করে । মোট প্রদত্ত ভোটের ৩০.১ % লাভ করে , যা সরকার গঠন কারী দল থেকে মাত্র ০.৭% কম । ১৯৯১-১৯৯৬ ১৯৯১ সালে তার নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ বাংলাদেশের তৎকালীন বৃহত্তম বিরোধীদল হিসেবে প্রকাশ পায়। ১৯৯১ সালের স্বৈরাচার পতন আন্দোলনে বাংলাদেশের সবচেয়ে প্রাচীন রাজনৈতিক দল আওয়ামী লীগের নেতৃত্ব দেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালে তিনি তত্ত্বাবধায়ক সরকারের রূপরেখা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে প্রথম মেয়াদকাল, ১৯৯৬-২০০১ ১৯৯৬ সালে তার দল আওয়ামী লীগ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে বামপন্থী দলগুলোর সাথে যুক্ত হয়ে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচির মাধ্যমে খালেদা জিয়ার বিএনপি সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে বাধ্য করে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার নিয়ে তার দল আন্দোলনে জয়ী হওয়ায় পরবর্তীতে তার দল জাতীয় নির্বাচনেও জয়লাভ করে এবং ঐ বছর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে তিনি প্রধানমন্ত্রী হন। ১৯৯৬ সাল থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেন। ২০০১ সালের নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বড় ব্যবধানে হেরে যায়। বিরোধীদলীয় সময়কাল, ২০০১-২০০৮ বিএনপি, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, জাতীয় পার্টি (নাজিউর রহমান মঞ্জু) ও ইসলামী ঐক্যজোট এর নির্বাচনী জোটের কাছে ২০০১ সালের ১ অক্টোবরের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ পরাজিত হয়। শেখ হাসিনা দলের এই পরাজয়ের জন্য তারই মনোনীত তৎকালীন রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দীন আহমেদ, সাবেক প্রধান বিচারপতি এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রধান বিচারপতি লতিফুর রহমান ও প্রধান নির্বাচন কমিশনার এম এ সাঈদকে দায়ী করেন। আন্দোলন-সংগ্রাম আওয়ামী লীগ ১৯৮২ সালে জেনারেল এরশাদের ক্ষমতায় আরোহণকে অবৈধ ঘোষণা করে। এবং তার শাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হয়ে উঠে এবং সামরিক শাসকের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ না করার ঘোষণা দেয়। কিন্তু পরবর্তীতে তার দল ১৯৮৬ সালে এই সামরিক শাসকের অধীনে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। হত্যাচেষ্টা ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট ঢাকায় এক জনসভায় বক্তৃতাদানকালে গ্রেনেড হামলায় তিনি অল্পের জন্য প্রাণে বেঁচে যান। উক্ত হামলায় তার ঘনিষ্ঠজন এবং আওয়ামী লীগ নেত্রী আইভি রহমানসহ ১৯ জন মৃত্যুবরণ করেন ও শতাধিক আহত হন। বিচারবিভাগীয় তদন্ত কমিশনের প্রতিবেদনে এই হামলাকে বিদেশি ষড়যন্ত্র বলে উল্লেখ করা হয়। এই গ্রেনেড হামলার তদন্তকে ভিন্ন খাতে করার জন্য 'জজ মিয়া' নাটক সহ বেশকিছু প্রহসন সৃষ্টি করেছিল তৎকালীন চারদলীয় ঐক্যজোট প্রশাসন। পরবর্তীতে বাংলাদেশের গোয়েন্দা সংস্থার তদন্তে বেরিয়ে আসে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়ার পুত্র তারেক রহমান, তৎকালীন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, বিএনপির শীর্ষস্থানীয় নেতা নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু, যুদ্ধাপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত জামায়াতে ইসলামীর নেতা আলী আহসান মুহাম্মদ মুজাহিদ, মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত পাকিস্তান ভিত্তিক জঙ্গী সংগঠন হরকাতুল জিহাদ (বর্তমানে বাংলাদেশে বিলুপ্ত) নেতা মুফতি হান্নান সহ বেশকিছু তৎকালীন প্রভাবশালী ব্যক্তিদের নাম। পরবর্তীতে ২০০৬ সালে তিনি পুনরায় আন্দোলন শুরু করেন কিছু নতুন সমস্যা নিয়ে। তত্ত্বাবধায়ক সরকার, সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপ ও গ্রেফতার, অক্টোবর ২০০৬-২০০৮ দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো গ্রেফতার হন ২০০৭ সালে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আমলে ২০০৭ সালের ১৬ জুলাই সকাল ৭:৩১-এ যৌথবাহিনী শেখ হাসিনাকে তার বাসভবন "সুধা সদন" থেকে গ্রেফতার করে। তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়। সেখানে আদালত তার জামিন আবেদন না-মঞ্জুর করে। শেখ হাসিনাকে বাংলাদেশের জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকারের বাসভবনকে সাব-জেল হিসেবে ঘোষণা করে সেখানে অন্তরীণ রাখা হয়। গ্রেফতারের পূর্বে শেখ হাসিনা, আওয়ামী লীগের প্রবীণ নেতা জিল্লুর রহমানকে দলের ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে যান। শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে দুইটি অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়। একটি হল ২০০৬ সালের ২৮ অক্টোবর পল্টনে রাজনৈতিক সংঘর্ষের জন্য হত্যা মামলা এবং অন্যটি হল প্রায় তিন কোটি টাকার চাঁদাবাজি মামলা।বিডি নিউজ, জুলাই ১৬, ২০০৭, দুপুর ১.১২ এর মাঝে একটির বাদী ২০০৮ সালের ডিসেম্বর মাসে মামলাটি তুলে নেন। জেল থেকে মুক্তিলাভের পরে তিনি চিকিৎসার্থে কয়েক মাস বিদেশে অবস্থান করেন। এরপর দেশে ফিরে দল নির্বাচনে অংশগ্রহণের প্রস্তুতি নেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দ্বিতীয় মেয়াদকাল, ২০০৯-২০১৪ ২০০৮ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট প্রায় তিন-চতুর্থাংশ আসনে জয়লাভ করে। বিজয়ী দলের সংসদীয় দলের নেতা হিসেবে তিনি জানুয়ারি ৬, ২০০৯-এ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। তার দল আওয়ামী লীগ এই নির্বাচনে ২৬০টি আসন লাভ করে। অপরদিকে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি পায় মাত্র ৩২টি আসন।বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম/এডি/ইএইচবি/এমআই/১৮৫৫ ঘ. তৃতীয় মেয়াদকাল (২০১৪-২০১৯) ইতোপূর্বে সপ্তম, অষ্টম এবং নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীন অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পূর্বে ড.ফখরুদ্দীন আহমদের নেতৃত্বাধীন তত্ত্বাবধায়ক সরকার কর্তৃক নির্ধারিত সময়ের চেয়ে বেশি সময় ক্ষমতা ধরে রাখা এবং রাজনীতিবিদ ও ব্যবসায়ীদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমনের নামে মামলা ও নির্যাতনের অভিযোগ এবং বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট কর্তৃক এ ব্যবস্থা অবৈধ ঘোষিত হওয়া প্রভৃতি কারণে সরকার তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানে পঞ্চদশ সংশোধনীর মাধ্যমে বাতিলের উদ্যোগ নেয়। পরবর্তীতে নবম সংসদে পঞ্চদশ সংশোধনী বিল পাশের মাধ্যমে তত্ত্বাবধায়ক ব্যবস্থা বাতিল করা হয় এবং দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকারের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে। ৫ই জানুয়ারি ২০১৪ সালে এ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এ নির্বাচনটি নবম জাতীয় সংসদের প্রধান বিরোধী দল বিএনপিসহ অধিকাংশ দলই বর্জন করে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ ও স্বতন্ত্রসহ ১৭টি দল নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। এ নির্বাচনে ৩০০টি আসনের মধ্যে ১৫৪টি আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় প্রার্থীরা বিজয়ী হওয়ায় নির্বাচনটি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়। ৫ই জানুয়ারি রোববার বাংলাদেশ সময় সকাল ৮টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত বাকী ১৪৭টি আসনে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।দৈনিক প্রথম আলো, মুদ্রিত সংস্করণ, প্রথম পাতা, ৬ জানুয়ারী, ২০১৪ইং এর আগে গত ১৮ নভেম্বর, ২০১৩ নির্বাচনকালীন সর্বদলীয় সরকার গঠিত হয়।দৈনিক সমকাল, মুদ্রিত সংস্করণ, প্রথম পাতা, ১৯ নভেম্বর, ২০১৩ ইং চতুর্থ মেয়াদকাল (২০১৯-২০২৪) আওয়ামী লীগ ৩০০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ২৮৮টি সংসদীয় আসনে জয়লাভ করলে শেখ হাসিনা চতুর্থবারের মত নির্বাচনে জয়ী হন। এটি ছিল একাধারে তৃতীয়বারের জন্য তার মেয়াদকাল। বিরোধীদলীয় প্রধান নেতা কামাল হোসেন নির্বাচনকে "প্রহসনমূলক" বলে ঘোষণা করেন এবং ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেন। নির্বাচনের পূর্বে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ ও অন্যান্য অধিকার সংগঠন সরকারকে বিরোধীদলের বিরুদ্ধে আতঙ্কজনক পরিবেশ সৃষ্টির অভিযোগে অভিযুক্ত করেন। নিউ ইয়র্ক টাইমস সম্পাদকীয় নির্বাচনকে প্রহসনমূলক বলে বর্ণনা করে, সম্পাদকীয়তে বলা হয়, পরিস্থিতি এমন ছিল যে, ভোট কারচুপি ছাড়াই হয়তো হাসিনা জিতে যেতেন, তবে কেন তিনি এমন করলেন? পঞ্চম মেয়াদকাল (২০২৪-বর্তমান) সমালোচনা পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারি হল বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সরকারের শাসনামলে সংঘটিত একটি ঘটনা, যাতে সরকার কানাডীয় কনস্ট্রাকশন কোম্পানি এসএনসি-লাভালিনকে পদ্মা সেতুর নির্মাণ কাজের চুক্তি পাইয়ে দেওয়ার বিনিময়ে বড় অঙ্কের টাকা দাবি করার অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। অভিযোগটি পরবর্তীকালে ভুল ও ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয় এবং কানাডার আদালত এরপর মামলাটি খারিজ করে দেয়। অভিযোগের একটি ফলস্বরূপ, বিশ্ব ব্যাংক দুর্নীতির বিষয়টি উল্লেখ করে ৬ কিমি লম্বা বাংলাদেশের পদ্মা নদীর উপর রেলপথ ও মহাসড়ক বিশিষ্ট পদ্মা সেতু নির্মাণ প্রকল্প হতে নিজেদের $১.২ বিলিয়ন ডলার সমমূল্যের অর্থায়ন পরিকল্পনা বাতিল করে। মামলা খারিজ হওয়ার তিন মাস পর শেখ হাসিনা যোগাযোগমন্ত্রী সৈয়দ আবুল হোসেনকে পদ থেকে অপসারণ করেন। ২০১২ সালের ১১ জুলাই, মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, আওয়ামী লীগ সরকারের উচিত বিশ্বব্যাংকের পাঠানো চিঠিটি প্রকাশ করা, যেখানে বিশ্বব্যাংক শেখ হাসিনা এবং অন্য তিন ব্যক্তির বিরুদ্ধে ঘুষের অভিযোগ এনেছে। ২০১৬ সালের ১৭ই জানুয়ারি, শেখ হাসিনা দাবি করেন যে, যুক্তরাষ্ট্র থেকে ব্যাংকের একজন এমডি বিশ্বব্যাংককে ঋণ বাতিল করার জন্য উসকানি দিয়েছে। ২০১৭ সালের ২৪শে জানুয়ারি, সংসদে নিজ বক্তব্যে, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রকল্প থেকে বিশ্ব ব্যাংকের ঋণ সহায়তা তুলে নেওয়ার জন্য মুহাম্মদ ইউনুসকে দায়ী করেন। তার মতে, ইউনুস প্রাক্তন যুক্তরাষ্ট্রের সেক্রেটারি অফ স্টেট হিলারি ক্লিনটন-এর সঙ্গে তদবির করেছিলেন বিশ্বব্যাংকে লোন বাতিল করতে প্ররোচিত করার জন্য। ২০১৭ সালের ১০ই ফেব্রুয়ারি কানাডার অন্টারিওতে সুপিরিয়র কোর্টের বিচারপতি ঘুষ-ষড়যন্ত্রের এই কেসটি কোন প্রমাণের অভাবে খারিজ করে দেয়। ২০২১ সালের ১লা ফেব্রুয়ারি কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা বাংলাদেশ সরকারের সমসাময়িক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নিকটবর্তী উচ্চপদস্থ নেতাদের বিতর্কিত কর্মকাণ্ড নিয়ে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যার শিরোনাম ছিলো "ওরা প্রধানমন্ত্রীর লোক"। তবে ২রা ফেব্রুয়ারি আইএসপিআর এর একটি সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এই প্রতিবেদনকে ভ্রান্ত ও ভিত্তিহীন বলে নিন্দা জানানো হয়। রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডার্স (আরএসএফ) ২০২১ সালের ‘প্রেস ফ্রিডম প্রিডেটর্স’ বা গণমাধ্যমের স্বাধীনতায় কঠোর হস্তক্ষেপ করা ৩৭ জন রাষ্ট্র বা সরকার প্রধানের তালিকায় তার নাম অন্তর্ভুক্ত করে। সৃষ্টিকর্ম গ্রন্থ রাজনীতির বাইরে লেখক হিসেবে শেখ হাসিনার অবদান রয়েছে। এ পর্যন্ত তিনি প্রায় ৩০টি গ্রন্থ রচনা ও সম্পাদনা করেছেন। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো; শেখ মুজিব আমার পিতা সামরিক বনাম গণতন্ত্র ওরা টোকাই কেন বিপন্ন গণতন্ত্র সাদা কালো বাংলাদেশে স্বৈরতন্ত্রের জন্ম অসমাপ্ত আত্মজীবনী (গ্রন্থে রূপান্তর) People and Democracy The Quest for Vision 2021 আমাদের ছোট রাসেল সোনা </div> সম্মাননা যুক্তরাষ্ট্রের বস্টন ইউনিভার্সিটি, ব্রিজপোর্ট বিশ্ববিদ্যালয় এবং ব্যারি বিশ্ববিদ্যালয়, জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয়, স্কটল্যান্ডের অ্যাবারটে বিশ্ববিদ্যালয়, ভারতের বিশ্বভারতী এবং ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয়, অস্ট্রেলিয়ার ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি, ব্রাসেলসের বিশ্ববিখ্যাত ক্যাথলিক বিশ্ববিদ্যালয়, রাশিয়ার পিপলস ফ্রেন্ডশিপ বিশ্ববিদ্যালয় এবং স্টেট ইউনিভার্সিটি অব পিটার্সবার্গ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে সম্মানসূচক ডক্টরেট ডিগ্রি প্রদান করে। এছাড়া ফ্রান্সের ডাওফি বিশ্ববিদ্যালয় তাকে ডিপ্লোমা প্রদান করে। ইউএন উইমেন থেকে "প্ল্যানেট ৫০-৫০ চ্যাম্পিয়ন" গ্লোবাল পার্টনারশীপ ফোরাম থেকে এজেন্ট অব চেঞ্জ পুরস্কার ৷ ফোর্বস-এ প্রথম ১০০ সর্বোচ্চ ক্ষমতাধর নারীর মধ্যে ৫৯ তম স্থান অর্জন৷ ৬ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সালে বস্টন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ল ডিগ্রি প্রদান৷ ৪ জুলাই ১৯৯৭ সালে জাপানের ওয়াসেদা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডক্টর অব ল সম্মাননা৷ অ্যবার্টয় বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ২৫ অক্টোবর ১৯৯৭ সালে ডক্টর অব ফিলোসপী সম্মাননা। ইউনেসকো থেকে ১৯৯৮ সালে ‘‘হুপে-বোয়ানি’’ শান্তি পুরস্কার৷ সর্বভারতীয় শান্তিসংঘ থেকে ১৯৯৮ সালে মাদার তেরেসা পুরস্কার। মহাত্মা গান্ধী ফাউন্ডেশন কর্তৃক ১৯৯৮ সালে এম কে গান্ধী পুরস্কার গ্রহণ ৷ আন্তর্জাতিক লায়ন্স ক্লাব কর্তৃক ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে ‘‘Medal of Distinction” পদক ও ১৯৯৬-১৯৯৭ সালে “Head of State” পদক লাভ। ২৪ জানুয়ারি ১৯৯৯ সালে ভারতের পশ্চিমবঙ্গের বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় থেকে 'ডেসিকোটাম' (ডক্টর অব লিটারেচার, হনোরিস কাউজা) লাভ ১৯৯৯ সালে খাদ্য ও কৃষি সংস্থা থেকে চেরেস পদক লাভ। ২০ অক্টোবর ১৯৯৯ সালে অস্ট্রেলীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃক সম্মানসূচক ডক্টর অফ ল ডিগ্রি লাভ ১৮ ডিসেম্বর ১৯৯৯ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অফ ল ডিগ্রি লাভ ৫ সেপ্টেম্বর ২০০০ সালে ব্রিজপয়েন্ট বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক ডক্টর অফ হিউম্যান লেটার লাভ। ৯ এপ্রিল ২০০০ সালে রানডলপ ম্যাকন উইমেন্স কলেজ কর্তৃক পার্ল এস. বাক পুরস্কার রোটারি ফাউন্ডেশন কর্তৃক পল হ্যারিস ফেলো ২০০৯ সালে ইন্দিরা গান্ধী পুরস্কার। ৩০ ডিসেম্বর, ২০১১ সালে বাংলা ভাষার ধারক ও বাহক হিসেবে বাংলা একাডেমি তাদের বার্ষিক সাধারণ সভায় সম্মানসূচক ফেলোশিপ প্রদান করে। ১২ জানুয়ারি, ২০১২ সালেদক্ষিণ এশিয়ায় শান্তি এবং উন্নয়নে অনন্য অবদানের জন্য ভারতের ত্রিপুরা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ডক্টর অব লিটারেচার বা ডি-লিট ডিগ্রি প্রদান করে।কালের কণ্ঠ, মুদ্রিত সংস্করণ, প্রথম পাতা, ৯ জানুয়ারি, ২০১২ইং নারী ও কন্যাশিশুদের শিক্ষা প্রসারের স্বীকৃতি হিসাবে ২০১৪ সালে ইউনেস্কো ‘শান্তিবৃক্ষ’ পুরস্কার। জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় নেতৃত্বের জন্য ইউএন পরিবেশ পুরস্কার (চ্যাম্পিয়নস অব দি আর্থ) লাভ। ২০১৪ সালে সমুদ্রসীমা জয়ের জন্য তিনি সাউথ সাউথ পুরস্কার লাভ করেন ৷ ১৬ নভেম্বর ২০১৫ সালে শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ‘ডক্টর অব দ্য ইউনিভার্সিটি’ ডিগ্রি। ২৬ মে ২০১৮ সালে পশ্চিমবঙ্গের কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় থেকে সম্মানসূচক 'ডক্টর অব লিটারেচার (ডি-লিট)' ডিগ্রি। ২৭ এপ্রিল ২০১৮ সালে বাংলাদেশে নারী শিক্ষা ও উদ্যোক্তা তৈরিতে অসামান্য নেতৃত্বদানের জন্য গ্লোবাল উইমেনস লিডারশিপ এওয়ার্ড লাভ করেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে দূরদর্শী নেতৃত্ব এবং রোহিঙ্গাদের আশ্রয়দানে দায়িত্বশীল নীতি ও তার মানবিকতার জন্য আইপিএস ইন্টারন্যাশনাল এচিভমেন্ট এওয়ার্ড এবং ২০১৮ স্পেশাল ডিসটিংশন এওয়ার্ড ফর লিডারশিপ গ্রহণ করেন। বিশ্বের অন্যতম শীর্ষস্থানীয় নিউজ এজেন্সি ‘দি ইন্টার প্রেস সার্ভিস (আইপিএস) এবং নিউইয়র্ক, জুরিখ ও হংকং ভিত্তিক তিনটি অলাভজনক ফাউন্ডেশনের নেটওয়ার্ক গ্লোবাল হোপ কোয়ালিশন ২৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ সালে দুটি অ্যাওয়ার্ডে ভূষিত করে। মার্চ ২০১৯ সালে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীকে ‘লাইফটাইম কন্ট্রিবিউশন ফর উইমেন এমপাওয়ারমেন্ট এ্যাওয়ার্ড’-এ ভূষিত করে ইনস্টিটিউট অব সাউফ এশিয়ান উইমেন। 'ভ্যাকসিন হিরো' –টিকাদান কর্মসূচিতে বাংলাদেশের সফলতা জন্য পুরস্কার দিয়েছে গ্লোবাল অ্যালায়েন্স ফর ভ্যাকসিনেশন এবং ইমিউনাইজেশন (জিএভিআই)। ‘এসডিজি অগ্রগতি পুরস্কার’-জাতিসংঘের সাসটেইনেবল ডেভেলপমেন্ট সলিউশনস নেটওয়ার্ক (এসডিএসএন) ২১ সেপ্টেম্বর ২০২১ সালে তাকে এই পুরস্কারে প্রদান করেন। ক্ষমতাধর নারী বিশ্ব পর্যায়ে শেখ হাসিনা ২০১১ সালে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী নারী নেতাদের তালিকায় ৭ম স্থানে ছিলেন। তার পূর্বে এবং পশ্চাতে ছিলেন যথাক্রমে লাইবেরিয়ার প্রেসিডেন্ট অ্যালেন জনসন সার্লেফ এবং আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জোহানা সিগার্ডারডটির । যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর জরিপে বিশ্বের সেরা প্রভাবশালী ও ক্ষমতাধর নারী নেতৃত্বের ১২জনের নাম নির্বাচিত করে। উল্লেখ্য যে, ২০১০ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমস সাময়িকীর অনলাইন জরিপে তিনি বিশ্বের সেরা দশ ক্ষমতাধর নারীদের মধ্যে ৬ষ্ঠ স্থানে ছিলেন। ঐ সময় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জার্মানির বর্তমান চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের ঠিক পিছনে ছিলেন এবং ব্যাপক প্রভাব-প্রতিপত্তি বিস্তার করেছিলেন। ২০১৫ সালে বিশ্বের ক্ষমতাধর নারীদের তালিকায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ৫৯তম স্থানে আছেন। ২০১৪ সালে এই তালিকায় শেখ হাসিনার অবস্থান ছিল ৪৭তম। এশীয় পর্যায়ে ২০১০ খ্রিষ্টাব্দের ৮ মার্চ বিশ্ব নারী দিবসের শতবর্ষে পদার্পণ উপলক্ষে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক বিশ্বখ্যাত সংবাদ সংস্থা সিএনএন ক্ষমতাধর ৮ এশীয় নারীর তালিকা প্রকাশ করেছিল। উক্ত তালিকায় ষষ্ঠ অবস্থানে ছিলেন শেখ হাসিনা। জনপ্রিয় সংস্কৃতিতে চলচ্চিত্র ২০১৮ সালে পিপলু খানের পরিচালনায় আওয়ামী লীগের সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনফরমেশনের সহায়তায় নির্মিত হাসিনা: এ ডটার'স টেল নামক তথ্যচিত্রে শেখ হাসিনার জীবনীর বিভিন্ন দিক সরাসরি তুলে ধরা হয়। ২০২১ সালের আল জাজিরার ওরা প্রধানমন্ত্রীর লোক- প্রামান্যচিত্রে শেখ হাসিনাকে তৎকালীন সেনাপ্রধান জেনারেল আজিজ আহমেদ এর দন্ডপ্রাপ্ত ভাইদের পৃষ্ঠপোষক হিসেবে চিত্রায়িত করা হয়। ভিডিওতে দেখা যায় জেনারেল আজিজ আহমেদের দন্ডপ্রাপ্ত ভাইদের মধ্যে একজন যিনি হারিস নামে পরিচিত তিনি প্রধানমন্ত্রীর থেকে পৃষ্ঠপোষকতা পাবার কথা বলছেন। স্থাপনা বাংলাদেশে বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনার নাম শেখ হাসিনার নামে নামকরণ করা হয়েছে; যার প্রায় সবই শেখ হাসিনা’র নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে করা। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ |- বিষয়শ্রেণী:১৯৪৭-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:জীবিত ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর বাংলাদেশী রাজনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী নারী রাজনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর বাংলাদেশী নারী রাজনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:বাঙালি রাজনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বিষয়শ্রেণী:নারী প্রধানমন্ত্রী বিষয়শ্রেণী:মহিলা সরকার প্রধান বিষয়শ্রেণী:মহিলা প্রতিরক্ষা মন্ত্রী বিষয়শ্রেণী:জাতীয় সংসদের মহিলা সদস্য বিষয়শ্রেণী:তৃতীয় জাতীয় সংসদ সদস্য বিষয়শ্রেণী:পঞ্চম জাতীয় সংসদ সদস্য বিষয়শ্রেণী:সপ্তম জাতীয় সংসদ সদস্য বিষয়শ্রেণী:অষ্টম জাতীয় সংসদ সদস্য বিষয়শ্রেণী:নবম জাতীয় সংসদ সদস্য বিষয়শ্রেণী:দশম জাতীয় সংসদ সদস্য বিষয়শ্রেণী:একাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য বিষয়শ্রেণী:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের রাজনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:রাজনীতিতে বাংলাদেশী নারী বিষয়শ্রেণী:বিরোধীদলীয় নেত্রী বিষয়শ্রেণী:বিরোধীদলীয় নেতা (বাংলাদেশ) বিষয়শ্রেণী:জাতীয় নেতার সন্তান বিষয়শ্রেণী:বাঙালি মুসলিম বিষয়শ্রেণী:বাংলাদেশী সুন্নি মুসলিম বিষয়শ্রেণী:শেখ পরিবার বিষয়শ্রেণী:গোপালগঞ্জ জেলার রাজনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:ইন্দিরা গান্ধী শান্তি পুরস্কার বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:বাংলা একাডেমির সম্মানিত ফেলো বিষয়শ্রেণী:আজিমপুর গভর্নমেন্ট গার্লস স্কুল এন্ড কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:ইডেন মহিলা কলেজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:গোপালগঞ্জ জেলার ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর বাংলাদেশী ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর বাঙালি বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মুসলিম বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর বাঙালি বিষয়শ্রেণী:আরব বংশোদ্ভূত বাংলাদেশী বিষয়শ্রেণী:দ্বাদশ জাতীয় সংসদ সদস্য
শেখ মুজিবুর রহমান
https://bn.wikipedia.org/wiki/শেখ_মুজিবুর_রহমান
কথ্য ভাষা
https://bn.wikipedia.org/wiki/কথ্য_ভাষা
থাম্ব|ইতালিতে কথা বলা ভাষা আমরা বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন ভাষায় কথা বলতে দেখি মানুষে যে ভাষাগুলোতে কথা বলে, সেগুলো কথ্য ভাষা। বর্তমানে, বিশ্বের সব দেশ মিলে কথ্য ভাষার সংখ্যা ৬,০০০-র বেশি। প্রত্যেক সম্প্রদায়ের নিজস্ব কথ্য ভাষার নিজস্ব ব্যাকরণের নিয়ম থাকে, কিন্তু এই নিয়মগুলো আর সমাজস্বীকৃত লিখিত ভাষার নিয়মগুলোর মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে। বাংলা ভাষার কথ্যরূপ এবং লিখিত রূপের মধ্যে পার্থক্য উল্লেখযোগ্য। আঞ্চলিকতা ছাড়াও বাচনভঙ্গী এবং প্রকাশভঙ্গীতে ব্যাপক রূপান্তর লক্ষ্য করা যায়। যেমন ঢাকার প্রমিত সমাজে কথ্যভাষায় তৎসম শব্দের ব্যবহারে অনীহা লক্ষ্য করা যায়। বিষয়শ্রেণী:ভাষা বিষয়শ্রেণী:কথন বিষয়শ্রেণী:ভাষার ধরন ও শৈলী
ইউনিকোড
https://bn.wikipedia.org/wiki/ইউনিকোড
ইউনিকোড (যা আনুষ্ঠানিকভাবে ইউনিকোড মান নামে পরিচিত) তথ্য প্রযুক্তিতে ব্যবহৃত একটি মান বা আদর্শ যার উদ্দেশ্যে বিশ্বের সিংহভাগ লিখন পদ্ধতি দ্বারা সৃষ্ট পাঠ্যবস্তুকে দ্বি-আংকিক পরিগণক যন্ত্র (ডিজিটাল কম্পিউটার) ও টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থায় সঙ্গতিপূর্ণভাবে সংকেতায়ন, উপস্থাপন ও অন্যান্য কাজে ব্যবহার করা। ইউনিকোড কনসোর্টিয়াম নামক একটি অলাভজনক সংস্থা এই মানটির রক্ষণাবেক্ষণে নিয়োজিত আছে। এটিতে ১৫৯টি আধুনিক ও ঐতিহাসিক লিপির লিখনপ্রতীকগুলি ছাড়াও অন্যান্য অনেক প্রতীক, ইমোজি (আবেগ-অনুভূতিজ্ঞাপক চিত্রপ্রতীক) এবং অদৃশ্য নিয়ন্ত্রণ ও বিন্যাস সংকেতের জন্য ১ লক্ষ ৪৪ হাজার ৭৬২টি পরিগণনীয় প্রতীক সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। ইউনিকোড মানে ব্যবহৃত প্রতীক সম্ভারটি সর্বদা আইএসও/আইইসি ১০৬৪৬ নামক আন্তর্জাতিক মানটিতে সংজ্ঞায়িত সর্বজনীন সংকেতায়িত প্রতীক সেটটি ব্যবহার করে; এই দুইটিতে সংজ্ঞায়িত সংকেতগুলি সম্পূর্ণ অভিন্ন। তবে ইউনিকোড কনসোর্টিয়ামের দাপ্তরিক প্রকাশনাটিতে শুধু ঐ প্রতীকগুলির সংকেতায়ন-ই সংজ্ঞায়িত করা হয়নি, বরং এর পাশাপাশি লিপিগুলি সম্পর্কে ও এগুলিকে কীভাবে প্রদর্শন করতে হবে সেসব বিষয়ে বিস্তারিত বিবরণ প্রদান করা হয়েছে, যার মধ্যে আদর্শীকরণ নিয়মাবলি, বিশ্লিষ্টকরণ, আদর্শ ক্রমবিন্যস্তকরণ, চিত্রায়ন, বহুভাষিক পাঠ্যবস্তুর জন্য দ্বিমুখী পাঠ্যবস্তু প্রদর্শন ক্রম, ইত্যাদি উল্লেখ্য। অধিকিন্তু ইউনিকোড মানে সফটওয়্যার নির্মাতা ও নকশাবিদদের প্রতীকসম্ভারটিকে সঠিকভাবে বাস্তবায়নে সহায়তা করার জন্য উপাত্ত নথি ও দৃশ্যমান রেখাচিত্রের প্রতি নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রতীকের সেটগুলিকে ঐক্যবদ্ধকরণে ইউনিকোডের সাফল্যের কারণে পরিগণক নির্দেশনাসামগ্রী বা কম্পিউটার সফটওয়্যারের আন্তর্জাতিকীকরণ ও স্থানীয়করণে এটির ব্যাপক ও আধিপত্য বিস্তারকারী প্রয়োগ ঘটেছে। বহুসংখ্যক সাম্প্রতিক তথ্য প্রযুক্তিতে এটি বাস্তবায়ন করা হয়েছে, যাদের মধ্যে আধুনিক পরিগণক পরিচালক ব্যবস্থা (অপারেটিং সিস্টেম), এক্সএমএল, জাভা প্রোগ্রামিং ভাষা (ও অন্যান্য প্রোগ্রামিং ভাষা) এবং ডট নেট পরিকাঠামোর নাম উল্লেখ্য। ইউনিকোড মানটিকে কেবল একটি নয়, বরং একাধিক প্রতীক সংকেতায়ন পদ্ধতি ব্যবহার করে বাস্তবায়ন করা যেতে পারে। ইউনিকোড মানে যে প্রতীক সংকেতায়ন পদ্ধতিগুলি সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, তাদের মধ্যে বেশ কিছু ইউনিকোড রূপান্তর বিন্যাস (ইউটিএফ) যেমন ইউটিএফ-৮, ইউটিএফ-১৬, ইউটিএফ-৩২ ছাড়াও আরও বেশ কিছু প্রতীক সংকেতায়ন পদ্ধতি আছে। ইউনিকোডের সবচেয়ে বেশি সংখ্যায় বাস্তবায়িত সংকেতায়ন পদ্ধতিগুলি হল ইউটিএফ-৮, ইউটিএফ-১৬ এবং অধুনা বিলুপ্ত ইউসিএস-২। জিবি ১৮০৩০ নামের একটি অনানুষ্ঠানিক আদর্শ আছে, যেটি ইউনিকোডকে সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন করেছে এবং যেটি চীনে মান হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইতিহাস ১৯৮৭ সালে জিরক্স (Xerox) কোম্পানির জো বেকার (Joe Becker) এবং অ্যাপল (Apple) কোম্পানির লি কলিন্স (Lee Collins) ও মার্ক ডেভিস (Mark Davis) একত্রে মিলে ইউনিকোডের কাজ শুরু করেছিলেন। তাদের মূল লক্ষ্য ছিল সকল ভাষাকে একটি সর্বজনীন সংকেতায়নের মানদণ্ডে নিয়ে আসা। ফলশ্রুতিতে পরবর্তী বছরের (১৯৮৮) আগস্ট মাসে জো বেকার "International/multilingual text character encoding system, tentatively called Unicode." (বাংলা অনুবাদ: "আন্তর্জাতিক/বহুভাষিক পাঠ্যপ্রতীক সংকেতায়ন পদ্ধতি, যাকে আপাতত 'ইউনিকোড' নামে ডাকা হচ্ছে") নামে একটি খসড়া প্রস্তবনা তৈরি করেন। এই প্রস্তাবনাটি ছিল একটি ১৬ বিটের প্রতীক সংকেতায়ন পদ্ধতি। Unicode is intended to address the need for a workable, reliable world text encoding. Unicode could be roughly described as "wide-body ASCII" that has been stretched to 16 bits to encompass the characters of all the world's living languages. In a properly engineered design, 16 bits per character are more than sufficient for this purpose. ১৬ বিটের প্রতীক সংকেতায়ন পদ্ধতি পছন্দ করার কারণ ছিল এই যে তাঁরা মনে করেছিলেন যে শুধু আধুনিক ভাষার বর্ণগুলি ব্যবহৃত হবে। Unicode gives higher priority to ensuring utility for the future than to preserving past antiquities. Unicode aims in the first instance at the characters published in modern text (e.g. in the union of all newspapers and magazines printed in the world in 1988), whose number is undoubtedly far below 214 = 16,384. Beyond those modern-use characters, all others may be defined to be obsolete or rare; these are better candidates for private-use registration than for congesting the public list of generally-useful Unicodes. পরবর্তীতে অনেক পুরাতন ভাষার জন্যও অন্যান্য বহু প্রতীক তালিকাভুক্ত করার প্রয়োজন পড়ে। এদের মাঝে এমন ভাষাও রয়েছে যেগুলি বর্তমানে আর ব্যবহৃত হয় না। (যেমন: মিশরীয় চিত্রলিপি, লিনিয়ার-এ, লিনিয়ার-বি ইত্যাদি) ১৯৮৯ সালে মেটাফোর (Metaphor) কোম্পানির কেন হুইসলার (Ken Whistler) এবং মাইক কার্নাগান (Mike Kernaghan), আর.এল.জি (RLG) কোম্পানির ক্যারেন স্মিথ-ইয়োশিমুরা (Karen Smith-Yoshimura) ও জোন আলিপ্র্যান্ড (Joan Aliprand) এবং সান মাইক্রোসিস্টেমস (Sun Microsystems) কোম্পানির গ্লেন রাইট (Glenn Wright) ইউনিকোড উন্নয়ন দলে যোগদান করেন। পরবর্তীতে ১৯৯০ সালে মাইক্রোসফট (Microsoft) কোম্পানির মিশেল সুইগনার্ড (Michel Suignard) ও অ্যাস্মাস ফ্রাইট্যাগ (Asmus Freytag) এবং নেক্সট (NeXT) কোম্পানির রিক ম্যাকগোয়ান (Rick McGowan) যোগদান করেন। ১৯৯০ সালের শেষের দিকে ইউনিকোডের খসড়া প্রস্তাবনা সম্পন্ন হয়। ১৯৯১ খ্রিস্টাব্দের অক্টোবর মাসে ইউনিকোড মানের প্রথম খণ্ডটি এবং ১৯৯২ সালের জুন মাসে এর দ্বিতীয় খণ্ডটি প্রকাশিত হয়। ইউনিকোডের গঠনইউনিকোড কী? বুলীয় বীজগণিতের নিয়মে গণনা করায় কম্পিউটার কেবলমাত্র শূন্য বা ০ বা অফ এবং এক বা ১ বা অন এই দুটি অবস্থা বোঝে । এক-একটি সংখ্যাকে বোঝানোর জন্য কম্পিউটারে ০ এবং ১ এর বিভিন্ন ক্রম ব্যবহার করা হয় । কম্পিউটারে লিপি বা অন্যান্য অক্ষর সংরক্ষিত হয় সেই অক্ষরগুলির প্রতিটির জন্য ০ ও ১-এর অদ্বিতীয় একটি ক্রম দিয়েCharacter Encoding । একটি প্রতীক সংকেতায়ন পদ্ধতি এরূপ একটি অদ্বিতীয় ক্রমের সঙ্গে একটি অক্ষরকে সংযুক্ত করে । এই সমস্ত ক্রমগুলিকে একত্রে বলা হয় কোডস্পেস্ইউনিকোডের পরিভাষা সূচী এবং কোডস্পেসের অন্তর্ভুক্ত প্রত্যেকটি ক্রমকে ক‌োড পয়েন্ট বলা হয় । কম্পিউটারে ব্যবহারের জন্য একাধিক বর্ণসংকেতায়ন ব্যবস্থা রয়েছে । প্রত্যেকটি অক্ষরের জন্য বিভিন্ন বর্ণসংকেতায়ন ব্যবস্থায় ওই অদ্বিতীয় সংখ্যার মান ভিন্ন হওয়ায় তথ্য আদানপ্রদানে অসুবিধা দেখা দেয় । ইউনিকোডে প্রত্যেকটি পরিচিত অক্ষরের জন্য একটি করে কোডপয়েন্ট বরাদ্দ করা হয় এবং প্রত্যেকটি কোডপয়েন্টকে একটি অদ্বিতীয় ষষ্ঠদশনিধান বিশিষ্ট পূর্ণসংখ্য দ্বারা চিহ্নিত করা হয় । "U+" এর পর কোডপয়েন্টটির ষষ্ঠদশনিধান বিশিষ্ট সংখ্যাটিকে লিখে কোডপয়েন্টটিকে চিহ্নিত করা হয় । ইউনিকোডে বর্তমানে ১১,১৪,১১২ সংখ্যক ক‌োডপয়েন্ট রয়েছে, যেগুলিকে 016 থেকে 10FFFF16 পর্যন্ত সংখ্যগুলি দ্বারা চিহ্নিত করা হয় । যদিও প্রত্যেকটি কোডপয়েন্ট লিখনযোগ্য অক্ষরকে নির্দেশ করে না । উদাহরণস্বরূপ, U+200F কোডপয়েন্টটি Zero Width Non-Joiner অক্ষরটিকে চিহ্নিত করে, যেটিকে মুদ্রিত করা বা কম্পিউটারের মনিটরে দেখানো সম্ভব নয় । ইউনিকোডে অন্তর্ভুক্ত লিপিসমূহ আরবি সিলোটি আর্মেনীয় ইংরেজি হিন্দি বাংলা ব্রাই বা ব্রেইল কানাডীয় আদিবাসী চেরোকী কপ্টীয় সিরিলীয় দেবনাগরী ইথিওপীয় জর্জীয় গ্রিক গুজরাটি গুরুমুখী (পাঞ্জাবি) হান (কাঞ্জি, হাঞ্জা, হাঞ্জি) হাঙ্গুল (কোরীয়) হিব্রু হিরাগানা ও কাতাকানা (জাপানি) আ-ধ্ব-ব খমের (ক্যাম্বোডীয়) কন্নড় লাও লাতিন মালয়ালম মঙ্গোলীয় বর্মী ওড়িয়া সিরীয় তামিল তেলুগু থাই তিব্বতি টিফিনাঘ য়ি ঝুয়িন আরও দেখুন গ্নু ইউনিফন্ট তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ The Unicode Consortium Alan Wood's Unicode Resources Contains lists of word processors with Unicode capability; fonts and characters are grouped by type; characters are presented in lists, not grids বিষয়শ্রেণী:মুদ্রণবিদ্যা বিষয়শ্রেণী:অক্ষর এনকোডিং
ক্রিকেট
https://bn.wikipedia.org/wiki/ক্রিকেট
thumb|300px|২০০৫ সালের জানুয়ারিতে অনুষ্ঠিত দক্ষিণ আফ্রিকা ও ইংল্যান্ডের মধ্যে একটি টেস্ট ম্যাচ। ডানে কালো প্যান্ট পরা ব্যক্তিরা হলেন আম্পায়ার। টেস্ট ক্রিকেট, প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেট ও ক্লাব ক্রিকেট প্রথাগত সাদা পোশাকে ও লাল বলে খেলা হয়। অধুনা একদিনের খেলাসহ দিবা-রাত্রির খেলাতে রঙ্গিন পোশাক ও সাদা বল ব্যবহার করা হয়। thumb|300px|মেলবোর্নে অনুষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়া ও ভারতের মধ্যে একটি একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলা। ব্যাটসম্যানের পরনে হলুদ পোশাক, ফিল্ডারদের পরনে নীল।thumb|300px|হ্যাম্পশায়ারে অনুষ্ঠিত ইংল্যান্ড ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে অনুষ্ঠিত একটি টুয়েন্টি২০ খেলা। ২০ ওভারের টুয়েন্টি২০ খেলাগুলো সাধারণত‍ঃ সন্ধ্যায় শুরু হয় ও আড়াই থেকে তিন ঘণ্টা স্থায়ী হয়। ক্রিকেট হচ্ছে ব্যাট ও বলের একটি দলীয় খেলা যাতে এগারোজন খেলোয়াড়বিশিষ্ট দুইটি দল অংশ নেয়। এই খেলাটির উদ্ভব হয় ইংল্যান্ডে। পরবর্তীতে ব্রিটিশ উপনিবেশগুলোসহ অন্যান্য দেশগুলোতে এই খেলা ব্যাপকভাবে প্রভাব বিস্তার লাভ করে চলছে। বর্তমানে ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ওয়েস্ট ইন্ডিজ, জিম্বাবুয়ে, আফগানিস্তান ও আয়ারল্যান্ড আন্তর্জাতিক অঙ্গনে ৫ দিনের টেস্ট ক্রিকেট ম্যাচ খেলে থাকে। ২০০৫ সাল থেকে জিম্বাবুয়ে স্বেচ্ছায় টেস্ট ক্রিকেট থেকে নিজেদেরকে বিচ্ছিন্ন করে রেখে ২০১১ সালে আবার খেলায় ফিরে আসে। এছাড়া, আরো বেশ কিছু দেশ ক্রিকেটের আন্তর্জাতিক সংস্থা আইসিসি'র সদস্য। টেস্টখেলুড়ে দেশগুলি ছাড়াও আইসিসি অনুমোদিত আরো দু’টি দেশ অর্থাৎ মোট ১২টি দেশ একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করে থাকে। খেলোয়াড় হিসেবে যিনি ক্রিকেট খেলায় অংশগ্রহণ করেন বা খেলে থাকেন, তিনি ক্রিকেটার নামে পরিচিত।Kirkpatrick, E. M., ed. (1983). Chambers 20th Century Dictionary (New Edition 1983 ed.). Edinburgh: W & R Chambers Ltd. p. 296. . ক্রিকেট খেলা ঘাসযুক্ত মাঠে (সাধারণত ওভাল বা ডিম্বাকৃতির) খেলা হয়, যার মাঝে ২২ গজের ঘাসবিহীন অংশ থাকে, তাকে পিচ বলে। পিচের দুই প্রান্তে কাঠের তিনটি করে লম্বা লাঠি বা স্ট্যাম্প থাকে। ঐ তিনটি স্ট্যাম্পের উপরে বা মাথায় দুইটি ছোট কাঠের টুকরা বা বেইল থাকে। স্ট্যাম্প ও বেইল সহযোগে এই কাঠের কাঠামোকে উইকেট বলে। ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী দু’টি দলের একটি ব্যাটিং ও অপরটি ফিল্ডিং করে থাকে। ব্যাটিং দলের পক্ষ থেকে মাঠে থাকে দুইজন ব্যাটসম্যান। তবে কোন কারণে ব্যাটসম্যান দৌড়াতে অসমর্থ হলে ব্যাটিং দলের একজন অতিরিক্ত খেলোয়াড় মাঠে নামতে পারে। তিনি রানার নামে পরিচিত। ফিল্ডিং দলের এগারজন খেলোয়াড়ই মাঠে উপস্থিত থাকে। ফিল্ডিং দলের একজন খেলোয়াড় (বোলার) একটি হাতের মুঠো আকারের গোলাকার শক্ত চামড়ায় মোড়ানো কাঠের বা কর্কের বল বিপক্ষ দলের খেলোয়াড়ের (ব্যাটসম্যান) উদ্দেশ্যে নিক্ষেপ করে। সাধারণত নিক্ষেপকৃত বল মাটিতে একবার পড়ে লাফিয়ে সুইং করে বা সোজাভাবে ব্যাটসম্যানের কাছে যায়। ব্যাটসম্যান একটি কাঠের ক্রিকেট ব্যাট দিয়ে ডেলিভারীকৃত বলের মোকাবেলা করে, যাকে বলে ব্যাটিং করা। যদি ব্যাটসম্যান না আউট হয় দুই ব্যাটসম্যান দুই উইকেটের মাঝে দৌড়িয়ে ব্যাটিং করার জন্য প্রান্ত বদল করে রান করতে পারে। বল নিক্ষেপকারী খেলোয়াড়বাদে অন্য দশজন খেলোয়াড় ফিল্ডার নামে পরিচিত। এদের মধ্যে দস্তানা বা গ্লাভস হাতে উইকেটের পিছনে যিনি অবস্থান করেন, তাকে বলা হয় উইকেটরক্ষক। যে দল বেশি রান করতে পারে সে দল জয়ী হয়। একদিনের ক্রিকেটে জয়লাভ দু'ধরনের হয়:- (ক) রানের ব্যবধানে এবং (খ) উইকেটের ব্যবধানে। রানের ব্যবধানে জয়লাভের উদাহরণ হচ্ছে - প্রথমে ব্যাট করে বাংলাদেশ দল ৫০ ওভারে ৪ উইকেটের বিনিময়ে ৩১১ রান করে। পরবর্তীতে অস্ট্রেলিয়া দল ৪৭ ওভারে সবক'টি উইকেট বা ১০ উইকেটের বিনিময়ে ২১০ রান করে। ফলে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ১০১ রানে জয়ী হবে। উইকেটের ব্যবধানে জয়লাভের উদাহরণ হচ্ছে - প্রথমে ব্যাট করে অস্ট্রেলিয়া দল ৫০ ওভারে ৮ উইকেট হারিয়ে ২৩৮ রান করে। পরবর্তীতে বাংলাদেশ দল ৩৭•৫ ওভারে ৩ উইকেট হারিয়ে ২৩৯ রান করে। ফলে বাংলাদেশ অস্ট্রেলিয়ার বিপক্ষে ৭ উইকেটে জয়ী হবে। কয়েকশ’ বছর ধরে ক্রিকেট একটি দলীয় খেলা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এটির আধুনিক রূপের সূত্রপাত হয় ইংল্যান্ডে এবং কমনওয়েলথ দেশগুলোর মধ্যেই এই খেলা সবচেয়ে বেশি জনপ্রিয়। দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশ যেমন: বাংলাদেশ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা, ভারত ও আফগানিস্তানে ক্রিকেটই অধিক জনপ্রিয় খেলা। বিভিন্ন অঞ্চল যেমনঃ ইংল্যান্ড ও ওয়েলস, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, দক্ষিণ আফ্রিকা, জিম্বাবুয়ে, বারমুডা এবং ক্যারিবিয়ানের ইংরেজিভাষী দ্বীপ রাষ্ট্রসমূহে ক্রিকেট একটি প্রধান খেলা। ক্যারিবীয় অঞ্চলের দেশগুলো একত্রে ওয়েস্ট ইন্ডিজ নামে বিশ্বে ক্রিকেট খেলে থাকে। নেদারল্যান্ডস, কেনিয়া, নেপাল ও আর্জেন্টিনা প্রভৃতি দেশে বিভিন্ন অ-পেশাদার ক্রিকেট ক্লাব সুপ্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এছাড়া একশর বেশি ক্রিকেট-খেলুড়ে দেশ রয়েছে যারা বিশ্ব ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রণ সংস্থা আইসিসি'র সদস্য। ক্রিকেটে বিভিন্ন সময়ে অনেক রাজনৈতিক বিতর্ক উঠেছে, যার মধ্যে সবচেয়ে কুখ্যাত হচ্ছে ব্যাসিল ডি’অলিভিয়েরা কেলেঙ্কারি যার জন্য দক্ষিণ আফ্রিকাকে বিশ্ব ক্রিকেট থেকে বহিস্কার করা হয়েছিল। এছাড়া অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের বডিলাইন সিরিজ এবং অস্ট্রেলিয়া ও নিউজিল্যান্ডের মধ্যে আন্ডারআর্ম বোলিংয়ের ঘটনা উল্লেখযোগ্য। বর্ণনা thumb|150px|একটি ক্রিকেট বল। সাদা সেলাইকৃত অংশ সিম নামে পরিচিতএকদিনের খেলায় সাধারণত সাদা বল ব্যবহৃত হয়। right|thumb|150px|একটি ক্রিকেট ব্যাট ব্যাটিং দলের উদ্দেশ্য হচ্ছে যত বেশি ও যত দ্রুত পারা যায় রান করা। রান হয় যখন উভয় ব্যাটসম্যান উইকেটে নিজেদের মধ্যে প্রান্ত পরিবর্তন করেন। (সাধারণত ব্যাটসম্যান বল মোকাবেলার পরই রান নিতে চেষ্টা করেন, তবে এটি জরুরি নয়।) এছাড়া ব্যাটসম্যান যদি বলকে মাঠের সীমানার বাইরে পাঠিয়ে দিতে পারেন তখনও রান হয়। যদি মাঠ স্পর্শ না করে বল সীমানার বাইরে চলে যায় তবে ছয় রান এবং মাঠ স্পর্শ করে সীমানা পার হলে চার রান দেয়া হয়। এছাড়া বোলার নিয়ম মোতাবেক বল না করলেও রান দেয়া হয়। বোলিং দলের উদ্দেশ্য হচ্ছে ব্যাটিং দলের সব ব্যাটসম্যানদের আউট (উইকেট, অথবা ডিসমিসাল নামেও পরিচিত) করে দেয়া। ব্যাটসম্যান বিভিন্নভাবে আউট হতে পারে। সবচেয়ে ভাল পথ হচ্ছে বোলারের এমনভাবে বল নিক্ষেপ করা যাতে ব্যাটসম্যান বলকে ঠিকমত খেলতে পারে না এবং বল স্ট্যাম্পে আঘাত করে বেইল ফেলে দেয়। এ ধরনের আউটকে বোল্ড বলে। ব্যাটসম্যানেরা যখন দৌড়ে রান নেয় তখন ফিল্ডাররা বল নিক্ষেপ করে ব্যাটসম্যান কর্তৃক ঠিকমত ক্রিজে পোঁছার আগেই স্ট্যাম্প থেকে বেইল ফেলে দেয়ার চেষ্টা করে। এটি রান আউট নামে পরিচিত। অন্যান্য আউট করার পদ্ধতির মধ্যে আছে ব্যাটসম্যানের মোকাবেলাকৃত বল মাটিতে পরার আগেই ক্যাচ ধরা যা কট আউট নামে পরিচিত এবং ব্যাটসম্যানের পায়ে বল লাগানোর ফলে এল.বি.ডব্লিউ. বা লেগ বিফোর উইকেটের ফাঁদে ফেলে আউট করা হয়। কোন বল মোকাবেলা ও রান নেয়ার পর ব্যাটসম্যান যখন আর কোন রান করার চেষ্টা করেন না তখন বলকে "মৃত (dead)" ঘোষণা করা হয় এবং এর পরিবর্তে আরেকটি বল নিক্ষেপ করা হয়। খেলাটি ছয়টি (বৈধ) বলের ওভারে খেলা হয়। বিভিন্ন ধরনের খেলায় ওভারসংখ্যার বিভিন্নতা রয়েছে। ওভার শেষে ব্যাটিং ও বোলিং করা দল প্রান্ত বদল করে এবং ফিল্ডিং দলকে বোলার পরিবর্তন করতে হয়। এসময় আম্পায়ারদ্বয় তাদের অবস্থান পরিবর্তন করেন। একজন ব্যাটসম্যান আউট হয়ে গেলে তার স্থানে আরেকজন ব্যাটসম্যান ব্যাট করতে নামে। যখন ব্যাটিং দলের দশম ব্যাটসম্যান আউট হয়ে যায় তখন সে দলের ইনিংস শেষ হয়। দশ জন ব্যাটসম্যান আউট হওয়াকে বলে অল আউট। (সীমিত ওভারের ক্রিকেটে ইনিংস শেষ হয় যদি কোন দল অলআউট হয় অথবা দল পূর্বনির্ধারিত সংখ্যক ওভার খেলে ফেলে।) ইনিংস শেষে ব্যাটিং করা দল ফিল্ডিং এবং ফিল্ডিং করা দল ব্যাটিং করতে নামে। সাধারণত যে দল বেশি রান করে সে দল বিজয়ী হয়। তবে বিভিন্ন অবস্থায় জয়ের সংজ্ঞা বিভিন্ন হয়। উদাহরণস্বরুপ বলা যায় বৃষ্টির কারণে সীমিত ওভারের খেলার ওভার সংখ্যা কমিয়ে আনা হতে পারে, অথবা ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি অবলম্বন করে বিজয়ী নির্ধারন করা হতে পারে। ফলাফল যদি শেষে ব্যাট করা দলের বিপক্ষ দলের করা রানের চেয়ে কম রান করে সবাই আউট হয়ে যায় তবে সে দল "(n) রানে হেরেছে" বলা হয় (যেখানে (n) দুই দলের রানের পার্থক্য নির্দেশ করে)। যদি শেষে ব্যাট করা দল সবাই আউট হওয়ার আগেই বিপক্ষ দলের করা রানের চেয়ে বেশি রান করে তখন সে দল "(n) উইকেটে জিতেছে" বলা হয় (যেখানে (n) ১০ ও জয়ী দলের কতটি উইকেট পড়েছে তার পার্থক্য নির্দেশ করে)। যেসব খেলায় প্রতি দলের দু'টি ইনিংস থাকে তাদের ক্ষেত্রে যদি কোন দল প্রথম ও দ্বিতীয় ইনিংস মিলিয়ে বিপক্ষ দলের প্রথম ইনিংসের সমান রান করতে না পারে তবে এবং ২য় ইনিংসে সবাই আউট হয়ে যায় তবে বিপক্ষ দলকে আর ব্যাট করতে হয় না ও তারা ইনিংস ও (n) রানে জিতেছে বলা হয় (যেখানে (n) দুই দলের রানের পার্থক্য নির্দেশ করে)। যদি সব ব্যাটসম্যান আউট হওয়ার পর দুই দলের রান সমান হয় তাহলে টাই হয়। প্রতি দলে দুই ইনিংসের খেলাতে টাই প্রায় দেখাই যায় না। গতানুগতিক খেলাতে যদি বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে কোন দল জিততে না পারে তবে খেলাটিকে ড্র হিসেবে ঘোষণা করা হয়। যেসব খেলায় একটি দল কেবল একটি ইনিংস খেলে সেসব খেলাতে সাধারণত নির্দিষ্ট সংখ্যক ওভারের বাধ্যবাধকতা দেয়া থাকে। এগুলো সীমিত ওভারের অথবা একদিনের খেলা হিসেবে পরিচিত। এতে যে দল বেশি রান করে তারাই জিতে এবং এই খেলার ফলাফলে উইকেটের কোন মূল্য নেই বলে এসব খেলায় ড্র হয় না। যদি আবহাওয়ার কারণে এই খেলায় সাময়িক বিঘ্ণ ঘটে তাহলে ডাকওয়ার্থ-লুইস পদ্ধতি নামে একটি সূত্রের মাধ্যমে খেলার জেতার লক্ষ্যমাত্রা পুনঃনির্ধারিত হয়। একদিনের খেলার ফলাফল অমীমাংসিত হতে পারে যদি কোন দলই একটি সর্বনিম্ন সংখ্যক ওভার খেলতে না পারে। আবহাওয়া খারাপ থাকার কারণেই সাধারণত এ ঘটনা ঘটে। ক্রিকেটের আইন ক্রিকেট খেলায় ৪২টি ক্রিকেট আইন আছে, যা বিভিন্ন প্রধান ক্রিকেট-খেলুড়ে দেশের সাথে আলোচনার ভিত্তিতে প্রণয়ন করেছে মেরিলেবোন ক্রিকেট ক্লাব। কোন বিশেষ খেলাতে দলগুলো সর্বসম্মতিক্রমে কোন আইন পরিবর্তন বা লঙ্ঘন করতে পারে। অন্যান্য আইনগুলো প্রধান আইনের সম্পূরক এবং বিভিন্ন পরিস্থিতি সামলাতে ব্যবহৃত হয়। এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, সাম্প্রতিক সময়ে সীমিত ওভারের খেলায় পুরনো আদল থেকে বেরিয়ে ক্রিকেটকে আরো আকর্ষনীয় করতে ফিল্ডিং দলের ওপর কিছু বাধ্যবাধকতা আরোপ করা হচ্ছে। খেলোয়াড় ও কর্মকর্তা খেলোয়াড় একটি দল এগারজন খেলোয়াড় নিয়ে গঠিত হয়। খেলার দক্ষতার উপর নির্ভর করে এদেরকে বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান অথবা বোলার হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা যায়। যে-কোন ভারসাম্যপূর্ণ দলে সাধারণত পাঁচ থেকে ছয় জন বিশেষজ্ঞ ব্যাটসম্যান এবং চার থেকে পাঁচ জন বিশেষজ্ঞ বোলার থাকে। প্রতি দলেই একজন বিশেষজ্ঞ উইকেট রক্ষক থাকে। সাম্প্রতিককালে বিশেষজ্ঞ ফিল্ডারের ধারণা চালু হয়েছে এবং সমান গুরুত্ব পাচ্ছে। প্রতি দলে একজন অধিনায়ক থাকেন যিনি মাঠে গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেন। যে খেলোয়াড় বোলিং এবং ব্যাটিং উভয় ক্ষেত্রেই সমান পারদর্শী তিনি অল-রাউন্ডার হিসেবে পরিচিত। যিনি ব্যাটসম্যান ও উইকেটরক্ষণের কাজে পারদর্শী তিনি উইকেট-রক্ষক কাম ব্যাটসম্যান হিসেবে পরিচিত, যা কখনও কখনও বিশেষ ধরনের অল-রাউন্ডার হিসেবে বিবেচিত হয়। সত্যিকারের অল-রাউন্ডার দলের মূল্যবান খেলোয়াড় তবে এদের দেখা কমই মেলে। অধিকাংশ খেলোয়াড়ই হয় ব্যাটিং, না হয় বোলিংয়েই বেশি মনোযোগ দেন। আম্পায়ার প্রতি খেলায় মাঠে দুইজন আম্পায়ার থাকেন যারা খেলা পরিচালনা করেন। একজন আম্পায়ার (ফিল্ড আম্পায়ার) বোলার যে প্রান্ত থেকে বল করেন সেই প্রান্তে উইকেটের পিছনে অবস্থান করেন। মাঠে তিনিই অধিকাংশ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন। অন্য আম্পায়ার (স্কয়ার লেগ আম্পায়ার) মাঠে স্কয়ার লেগ অবস্থানে থাকেন, যাতে তিনি ব্যাটসম্যানকে পাশ থেকে দেখতে পারেন এবং তিনি যেসব সিদ্ধান্ত গ্রহণে ফিল্ড আম্পায়ারকে সাহায্য করেন। পেশাদার খেলায় মাঠের বাইরে একজন অতিরিক্ত আম্পায়ার থাকেন যিনি তৃতীয় আম্পায়ার বা থার্ড আম্পায়ার নামে পরিচিত। মাঠের আম্পায়ারেরা কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রয়োজনবোধে তৃতীয় আম্পায়ারের সাহায্য নিতে পারেন যিনি টেলিভিশনে পুণঃপ্রচার দেখে সিদ্ধান্ত নেন। আন্তর্জাতিক খেলাগুলোতে মাঠের বাইরে একজন ম্যাচ রেফারি থাকেন, যিনি খেলাটি ক্রিকেটের আইনানুযায়ী হচ্ছে কি-না তা পর্যবেক্ষণ করেন। স্কোরার সাধারণত প্রতিটি দল একজন করে দুইজন স্কোরার নিয়োগ করে থাকে। ক্রিকেটের আইন অনুসারে অফিসিয়াল স্কোরার কত রান হয়েছে, কত উইকেট পড়েছে, এবং কত ওভার খেলা হয়েছে তা লিপিবদ্ধ করে রাখে। তারা আম্পায়ারের সংকেত দেখে এবং খেলার বিরতিতে আম্পায়ারের সাথে স্কোর মিলিয়ে দেখে তা ঠিক আছে কিনা। বাস্তবে স্কোরাররা আরো অনেক ব্যাপার লিপিবদ্ধ করে, যেমনঃ বোলারের বোলিং পরিসংখ্যান, কোন দল কি হারে বোলিং করেছে এবং দলগুলোর বিভিন্ন গড় ও পরিসংখ্যান ইত্যাদি। আন্তর্জাতিক ও জাতীয় ক্রিকেট প্রতিযোগিতায় গণমাধ্যমকে বিভিন্ন রেকর্ড ও পরিসংখ্যান জানতে হয়, তাই ধারাভাষ্যকার, সাংবাদিক ও সম্প্রচারের জন্য বিভিন্ন সময়ে আনঅফিসিয়াল স্কোরার রাখা হয়। অফিসিয়াল স্কোরাররা মাঝে মাঝে ভুল করে, তবে আম্পায়ারের ভুলের সাথে এটির তফাৎ হলো ঘটনার পর এটিকে সংশোধন করা যায়। খেলার মাঠ ক্রিকেট মাঠ একটি বিশাল বৃত্তাকার অথবা ডিম্বাকার ঘাসবহুল জমিনের উপর নির্মিত হয়। যদিও মাঠের আকারের বেলায় সুনির্দিষ্ট কোন নিয়ম নেই তবে এটির ব্যাস সাধারণত ৪৫০ ফুট (১৩৭ মি) থেকে ৫০০ ফুট (১৫০ মি) এর মধ্যে হয়ে থাকে। অধিকাংশ মাঠেই দড়ি দিয়ে মাঠের পরিসীমা ঘেরা দেয়া থাকে যা সীমানা নামে পরিচিত। পিচ right|thumb|150px|একটি উইকেট তিনটি মাটিতে পোতা স্ট্যাম্পের সমন্বয়ে গঠিত। স্ট্যাম্পের উপরে দুইটি বেইল থাকে 150px|বোলারের প্রান্ত থেকে ক্রিকেট পিচের দৃশ্য450px|ক্রিকেট পিচের মাপজোখ ক্রিকেট খেলার বেশিরভাগ ঘটনা ঘটে থাকে মাঠের মাঝে যা সাধারণত ছোট করে ছাটা ঘাস অথবা ঘাসবিহীন চতুর্ভুজাকৃতির অংশ। এটিকে পিচ বলা হয়। পিচের পরিমাপ হচ্ছে ১০ × ৬৬ ফুট (৩.০৫ × ২০.১২ মি)। পিচের দুইপ্রান্তে তিনটি করে খাড়া কাঠের দন্ড মাটিতে গাঁথা থাকে, যা স্টাম্প নামে পরিচিত। স্টাম্পের উপরে দুটি কাঠের টুকরা থাকে যা বেইল নামে পরিচিত।, তিনটি স্ট্যাম্পের উপর দুটি বেইল স্ট্যাম্পগুলোকে সংযুক্ত করে। ক্রিকেটে স্ট্যাম্পে লেগে আউট হওয়ার ক্ষেত্রে যেকোন একটি বেইল ফেলা বাধ্যতামূলক। তিনটি স্ট্যাম্প ও দুটি বেইলের সমষ্টিগত সেট নামে উইকেট নামে পরিচিত। পিচের একপ্রান্তের নাম ব্যাটিং প্রান্ত, যে প্রান্তে ব্যাটসম্যান দাঁড়ায় এবং অপর প্রান্তের নাম বোলিং প্রান্ত যেখান থেকে বোলার দৌড়ে এসে বল করে। দুটি উইকেটের সংযোগকারী রেখার মাধ্যমে মাঠটি দুটি অংশে বিভক্ত হয়; তার মধ্যে যেদিকে ব্যাটসম্যান ব্যাট ধরেন সেদিকটিকে অফ সাইড এবং যে দিকে ব্যাটসম্যানের পা থাকে সেদিকটিকে বলে অন সাইড। অন্যভাবে বলা যায় ডান-হাতি ব্যাটসম্যানের ডান দিক এবং বাম-হাতি ব্যাটসম্যানের বাম দিক হচ্ছে অফ সাইড এবং অন্যটি অন সাইড বা লেগ সাইড। পিচে যে রেখা আঁকা থাকে তাকে বলে ক্রিজ। ব্যাটসম্যান আউট হয়েছেন কিনা তা যাচাই করার জন্য ক্রিজ ব্যবহৃত হয়। এছাড়া বোলার বৈধ বল করেছেন কি না তা যাচাইয়ের জন্যও ক্রিজ ব্যবহৃত হয়। right|thumb|150px|একটি প্রমিত ক্রিকেট মাঠ খেলোয়াড়ের অবস্থান ম্যাচের গঠন টস খেলার শুরুতে মুদ্রার নিক্ষেপের মাধ্যমে কোন দল আগে ব্যাটিং করবে এবং কোন দল বোলিং করবে সেটা নির্ধারণ করা হয়। একে টস বলে। ওভার প্রতি ৬ বৈধ বলে একটি ওভারের সফল সমাপ্তি ঘটে। ছয়টি বল করার পর আম্পায়ার ‘ওভার’ বলে থাকেন; তাই ওভার নামকরণ করা হয়েছে। পিচের একপ্রান্তে অবস্থান নিয়ে বোলার বোলিং করেন। ওভার শেষে উইকেটের অপর প্রান্ত থেকে অন্য আরেকজন বোলার বল করার জন্য প্রস্তুত থাকেন। এরফলে ফিল্ডিংয়ের অবস্থান পরিবর্তনসহ স্কয়ার লেগে অবস্থানকারী আম্পায়ারও পরিবর্তন হয়ে উইকেটের পিছনে অবস্থান করেন। তবে, ব্যাটসম্যান তার নিজ অবস্থানে থেকেই বোলারকে মোকাবেলা করে থাকেন। তখন ব্যাটসম্যান ‘স্ট্রাইকার’ ও পিচের অন্য প্রান্তে অবস্থানকারী ব্যাটসম্যান ‘নন-স্ট্রাইকার’ নামে পরিচিত। কোনো বোলার পরপর ২ ওভার বোলিং করতে পারেন না। কিন্তু একপ্রান্তে থেকে তিনি অসংখ্য ওভার করতে সক্ষম। ৫০-ওভারের একদিনের আন্তর্জাতিকে একজন বোলার সর্বোচ্চ ২০% বা ১০ ওভার এবং ২০-ওভারের টুয়েন্টি২০ ক্রিকেটে সর্বোচ্চ ২০% বা ৪ ওভার করতে পারে। তবে, টেস্ট ক্রিকেটে ওভার সংখ্যা অসীম থাকায় ওভার সংখ্যার কোন সীমারেখা নেই। পাওয়ার প্লে ১৯৯১ সালে প্রথম এ নিয়ম চালু করা হয় তবে সাম্প্রতিক সময় এ নিয়মের ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। এটি শুধুমাত্র একদিনের ম্যাচে প্রযোজ্য। প্রথম ১০ ওভারের পাওয়ার প্লেতে সর্বোচ্চ দুজন ফিল্ডার ৩০গজ বৃত্তের বাইরে থাকতে পারে। এরপর ১৬ থেকে ৪০ ওভারের মধ্যে যেকোনো সময় ব্যাটিং দল ৫ ওভার এবং বোলিং দল ৫ ওভার পাওয়ার প্লে বেছে নিতে পারে,এ সময় সর্বোচ্চ ৩ জন ৩০ গজের বাইরে থাকতে পারে।http://static.icc-cricket.yahoo.net/ugc/documents/DOC_BB1EB9635DEBBF50590D506FE7937343_1317276292184_861.pdf . ইনিংসের পরিসমাপ্তি খেলার সময় ব্যাটিং ও রান করা ব্যাটিং রান করা অতিরিক্ত বোলিং এবং আউট বোলিং ব্যাটসম্যানের আউট হওয়া ফিল্ডিং ও উইকেট-রক্ষণ অন্যান্য ভূমিকা অধিনায়ক রানার যদি কোন ব্যাটসম্যান ব্যাট করার জন্য সক্ষম কিন্তু দৌড়াতে অসমর্থ হয় তবে আম্পায়ার ও ফিল্ডিং দলের অধিনায়ক ব্যাটিং দলের আরেক খেলোয়াড়কে অসমর্থ খেলোয়াড়ের রানার হিসেবে মাঠে নামার অনুমতি দেন। সম্ভব হলে রানারকে অবশ্যই আগে ব্যাট করে আউট হয়েছে এমন হতে হয়। রানারের একমাত্র কাজ উইকেটের মাঝে দুর্বল খেলোয়াড়ের বদলে দৌড়ানো। রানারকে অবশ্যই যে ব্যাটসম্যানের হয়ে মাঠে নেমেছে, সেই ব্যাটসম্যানের ব্যবহৃত সকল উপকরন ধারণ করতে হয়। ২০১১ সালের জুনে, আইসিসির এক ঘোষণার ফলে ১ অক্টোবর থেকে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে রানার প্রথাটি বাতিল হয়ে যায়। বদলী খেলোয়াড় টেষ্ট ক্রিকেটের সাম্প্রতিক নিয়মে (২০১৯) আইসিসি অনুমোদন করেছে কোনো খেলোয়াড়ের মাথায় আঘাত লাগলে তার বদলে আরেকজন পূর্ণ খেলোয়াড় নামতে পারে।কিন্তু কোনো খেলোয়াড় বিশ্রামের জন্য মাঠ থেকে উঠে বদলি খেলোয়াড় নামলে সে শুধু ফিল্ডিং করতে পারে। ইতিহাস থাম্ব|ধারণা করা হয় মধ্যযুগীয় "ক্লাব বল" খেলা থেকে ক্রিকেটের উৎপত্তি এর তেমন কোনো ইতিহাস জানা যায়নি। তবে প্রথম ইংল্যান্ডে এ খেলা হয় বলে জানা যায়। ক্রিকেটের ধরন বিশ্বে বিভিন্ন ধরনের ক্রিকেট খেলা হয়; আন্তর্জাতিক পর্যায়ের পেশাদার ক্রিকেটের মধ্যে টেস্ট, ওডিআই ও টি২০আই উল্লেখযোগ্য। টেস্ট ক্রিকেট টেস্ট ক্রিকেট সাধারণত ৫ দিনে হয়। প্রতি দল দু’টি করে ইনিংস খেলে। এ খেলায় ৪ রকমভাবে ফলাফল নির্ধারণ করা হয়। একদিনের আন্তর্জাতিক একদিনের আন্তর্জাতিকে দুই দল ৫০ ওভার করে ব্যাটিং করে থাকে। এ খেলাগুলোয় সাদা রঙের বল ব্যবহার করা হয়। টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক টুয়েন্টি২০ আন্তর্জাতিক ক্রিকেট খেলার নবীনতম সংস্করণ।এখানে প্রতিটি দল ২০ ওভার করে ব্যাটিং করে। প্রথম-শ্রেণীর খেলা ক্রিকেটের অন্যান্য ধরন আন্তর্জাতিক গঠন আরও দেখুন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিকেট কাউন্সিল টেস্ট ক্রিকেট টেস্ট ক্রিকেট রেকর্ড টেস্ট ক্রিকেটের ইতিহাস (১৮৮৪ - ১৮৮৯) ক্রিকেটের ইতিহাস ১৭২৬ - ১৭৬৩ ক্রিকেটের ইতিহাস ১৬৯৬ পর্যন্ত ক্রিকেট বিশ্বকাপ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০১১ ক্রিকেট বিশ্বকাপ ২০০৭ রেকর্ডঃ বিশ্বকাপ ক্রিকেট একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেট তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Explanation of Cricket Cricket Explained (An American Viewpoint) Wisden Cricinfo CricketArchive International Cricket Council ICC World Cup বিষয়শ্রেণী:ক্রিকেট বিষয়শ্রেণী:ইংল্যান্ডে উদ্ভাবিত ক্রীড়া বিষয়শ্রেণী:বল খেলা বিষয়শ্রেণী:প্রাক্তন গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিক ক্রীড়া বিষয়শ্রেণী:দলগত ক্রীড়া বিষয়শ্রেণী:বল এবং ব্যাটের ক্রীড়া
README.md exists but content is empty. Use the Edit dataset card button to edit it.
Downloads last month
0
Edit dataset card