title
stringlengths
1
251
url
stringlengths
31
281
text
stringlengths
0
785k
জাগরেব
https://bn.wikipedia.org/wiki/জাগরেব
জাগরেব () দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের রাষ্ট্র ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী নগরী। এটি ক্রোয়েশিয়ার বৃহত্তম নগরী ও দেশটির সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু। এটি ক্রোয়েশিয়ার উত্তর-পশ্চিম ভাগে, মেদভেদনিকা পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে, সমুদ্রতল থেকে আনুমানিক ১২২ মিটার উচ্চতায়, সাভা নদীর বন্যাপ্লাবিত অববাহিকা অঞ্চলে অবস্থিত। পর্বতগুলির উত্তরে জাগোরিয়ে নামক অরণ্য, আঙুরের ক্ষেত, গ্রাম ও প্রাচীন দুর্গবিশিষ্ট অঞ্চলটি অবস্থিত। জাগরেব নগরীটির জলবায়ু গ্রীষ্মকালে তপ্ত ও শীতকালে শীতল প্রকৃতির। ২০১৮ সালে মূল নগরীটির প্রাক্কলিত জনসংখ্যা ছিল ৮ লক্ষের সামান্য বেশি। বৃহত্তর জাগরেব পৌরপিণ্ড এলাকার জনসংখ্যা ১০ লক্ষ ৮৬ হাজারের কিছু বেশি, যা ক্রোয়েশিয়ার সমগ্র জনসংখ্যার আনুমানিক এক-চতুর্থাংশ। জাগরেব ক্রোয়েশিয়ার শিল্প ও বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র। এখানকার শিল্পকারখানাগুলিতে ভারী যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক, ধাতব ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য, কাগজের দ্রব্য, জুতা ও চামড়াজাত দ্রব্য, বস্ত্র ও পোশাক প্রস্তুত করা হয়। নগরীটি পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় ইউরোপ থেকে আড্রিয়াটিক সাগর ও বলকান উপদ্বীপ অঞ্চলে গমনকারী মহাসড়ক ও রেলপথগুলির একটি সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে প্রতি বছর একটি বাণিজ্যমেলার আয়োজন করা হয়। জাগরেব আধুনিক ক্রোয়েশিয়ার সংস্কৃতির হৃৎকেন্দ্র। এখানে ক্রোয়েশিয়ার বিজ্ঞান ও শিল্পকলা অ্যাকাডেমি (প্রাক্তন যুগোস্লাভ বিজ্ঞান ও শিল্পকলা অ্যাকাডেমি) এবং ১৬৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাগরেব বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। এছাড়া এখানে একাধিক শিল্পকলা প্রদর্শনীকেন্দ্র, গীতিনাট্যশালা, ইতিহাস ও বিজ্ঞান জাদুঘর, এবং শিল্পকলা, নাট্য ও সঙ্গীত অ্যাকাডেমি অবস্থিত। বহুকাল ধরে বিদেশী শাসনের অধীনে থাকা সত্ত্বেও জাগরেবের ঐতিহাসিক স্থাপত্য আজও অটুট। এখানে এখনও বহু মধ্যযুগীয় ভবন, ১৮শ শতকে নির্মিত একটি প্রাসাদ ও ১১শ শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক একটি মহাগির্জা দাঁড়িয়ে আছে। গোথিক শৈলীতে নির্মিত সাধু মার্কের মহাগির্জা বা ক্যাথেড্রাল, ১৫শ শতকে নির্মিত ও সৌষ্ঠব ভঙ্গিতে উদীয়মান গির্জাশিখর সংবলিত সাধু স্টিভেনের মহাগির্জা এবং পুরাতন মহাশিল্পীদের অনেকগুলি চিত্রকর্ম সংবলিত স্ট্রসমায়ার চিত্রশালাটি উল্লেখ্য। নগরকেন্দ্র থেকে উত্তর দিকে পুরাতন গ্রাদেক ও কাপতোল শহরগুলির দিকে দুইটি প্রশস্ত সবুজ বেষ্টনী চলে গিয়েছে, এবং এগুলিতে বহুসংখ্যক জাদুঘর, চিত্রশালা ও প্রশস্ত চত্বর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। জাগরেব এখন যে এলাকায় অবস্থিত, সেখানে স্লাভীয় গোত্রের লোকেরা খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকে বসতি স্থাপন করেছিল। ১০৯৩ সালে একই এলাকায় একটি রোমান ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যাকে কেন্দ্র করে অপর একটি বসতি গড়ে ওঠে, যার নাম ছিল কাপ্তোল। মধ্যযুগে বহু শতাব্দী ধরে এই দুইটি নাগরিক ও ধর্মীয় বা যাজকীয় শহর সহাবস্থান করে ছিল এবং তারা ক্রোয়েশিয়ার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গঠন করেছিল। ১০ম শতকে নাগরিক শহরটিকে ক্রোয়েশিয়া রাজতন্ত্রের রাজধানী বানানো হয়। ১১শ শতকের শেষভাগে এসে এই শহর দুইটি হাঙ্গেরির নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ১২৪২ সালে নাগরিক শহরটি একটি হাঙ্গেরীয় মুক্ত রাজকীয় নগরীর মর্যাদা লাভ করে। এটি একটি স্বশাসিত সামন্ততান্ত্রিক লোকালয়ে পরিণত হয়। ১৩শ শতকে তুর্কিদের আক্রমণ থেকে প্রতিরক্ষার জন্য নাগরিক শহরটির চারপাশে প্রাচীর নির্মাণ করা হয় এবং এর নাম হয় গ্রাদেক, অর্থাৎ "দুর্গশহর"। ১৬শ শতকে ধর্মীয় কাপ্তোল শহরটিকেও দুর্গ দিয়ে প্রতিরক্ষা প্রদান করা হয়। ৩০০ বছর ধরে সম্প্রসারিত হতে হতে ১৯শ শতকে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই লোকালয় শেষ পর্যন্ত একত্রিত হয় এবং নতুন নতুন ভবন নির্মাণ হয় ও দক্ষিণদিকে সাভা নদীর বন্যাপ্লাবিত সমভূমিতে এটি সম্প্রসারিত হতে শুরু করে। নতুন এই শহরে অনেক উন্মুক্ত চত্ত্বর ও নগর উদ্যান নির্মাণ করা হয়। ১৭শ শতক থেকেই অনানুষ্ঠিকভাবে এই পৌর অঞ্চলটিকে "জাগরেব" নামে ডাকা শুরু হয়। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে এসে প্রশাসনিকভাবে গ্রাদেক ও কাপ্তোলকে একত্রিত করে "জাগরেব" (এবং জার্মান ভাষায় "আগ্রাম") নাম দেওয়া হয়। ১৮৬৭ সালে জাগরেব নগরীকে হাঙ্গেরির অধীনস্থ ক্রোয়েশিয়া ও স্লাভোনিয়া রাজ্যের রাজধানী বানানো হয়। ১৯শ শতকে ক্রোয়েশীয় জাতীয়তাবাদের পুনরুত্থানের সময় জাগরেব একই সাথে ক্রোয়েশিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন ও একটি সর্ব-যুগোস্লাভীয় আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল। ২০শ শতকের শুরুতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯১৮ সালে ক্রোয়েশিয়া অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং একীভূত সার্বীয়, ক্রোয়েশীয় ও স্লোভেনীয় রাজ্যের একটি অংশে পরিণত হয়, যা পরবর্তীতে ১৯২৯ সালে নাম বদলে যুগোস্লাভিয়া নামক দেশে পরিণত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির শাসনাধীনে জাগরেব একটি অধীনস্থ ক্রোয়েশীয় রাজ্যের রাজধানীতে পরিণত হয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাগরেব অক্ষশক্তির অধীনস্থ পুতুলরাষ্ট্র ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী ছিল। ১৯৪৫ সালের মে মাসে মার্শাল টিটো নগরীটিকে জার্মানদের হাত থেকে মুক্ত করেন এবং ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯৪৫ সালে ক্রোয়েশীয় রাজ্যটি যুগোস্লাভীয় ক্রোয়েশিয়া প্রজাতন্ত্র হিসেবে পুনরায় যুগোস্লাভিয়াতে যোগ দেয়। ১৯৯১ সালে ক্রোয়েশিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে যুগোস্লাভিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং জাগরেব এই নতুন রাষ্ট্রের রাজধানীতে পরিণত হয়। কিন্তু এর পর দেশটির বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, তাতে জাগরেব নগরীর ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৯৯৫ সালে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি পরে নগরীটিকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা হয়। ইতিহাস ক্রোয়েশিয়া সাম্রাজ্য (১৫২৭-১৯১৮) ক্রোয়েশিয়া সাম্রাজ্য-এ এই শহর ছিল রাজ্যের রাজধানী। ১৯৪১-বর্তমান নাৎজি জার্মানি সমর্থিত স্বাধীন ক্রোয়েশিয়া রাষ্ট্র-এ এই শহর ছিল রাজ্যের রাজধানী। পরবর্তীতে যুগোস্লাভিয়ার অন্তর্গত সমাজতান্ত্রিক ক্রোয়েশিয়ার কেন্দ্র হয় এই শহর । জলবায়ু জাগরেব এর জলবায়ু মহাসাগরীয় যা আর্দ্র মহাদেশীয় জলবায়ু অঞ্চলের সীমার কাছাকাছি। এখানে চারটি পৃথক ঋতু আছে। গ্রীষ্মকালে গরম হয়, এবং শীতকালে একটি আপাত শুষ্ক ঋতু ছাড়া ঠান্ডা। শীতকালীন গড় তাপমাত্রা -০.৫ ° সেলসিয়াস (৩১.১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এবং গ্রীষ্মে গড় তাপমাত্রা হল ২২ ° সে (৭১.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:ক্রোয়েশিয়ার শহর বিষয়শ্রেণী:ইউরোপের রাজধানী
জাম্বিয়া
https://bn.wikipedia.org/wiki/জাম্বিয়া
জাম্বিয়া দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম লুসাকা। দেশটির উত্তরে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও তানজানিয়া, পূর্বে মালাউই, দক্ষিণ-পূর্বে মোজাম্বিক, দক্ষিণে জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা ও নামিবিয়ার কাপ্রিভি, পশ্চিমে অ্যাঙ্গোলা। দেশটির আয়তন ৭৫২,৬১৪ বর্গকিমি। ডান|294x294পিক্সেল ইতিহাস রাজনীতি প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি Government of Zambia (State House) Parliament of Zambia (National Assembly) রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Zambia from UCB Libraries GovPubs BBC News Western liberal eyes African investments In zambia Zambia web Banner display সম্প্রদায় ওয়েবসাইট Zambia Community Website Social networking, Community directory, Travel Information & Services Zambian Musicians (Zambian Music) মিডিয়া Zambia News Agency Zambia 24 (Zambian Blog) blog featuring latest news, posts & comments Zambia Online The Zambian Zambian Map Zambian Dancer পর্যটন Zambia Tourism Board (Extensive travel guide) Zambia Travel Guide Zambia Travel Information বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:কমনওয়েলথ প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৬৪-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টান রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:স্থলবেষ্টিত দেশ বিষয়শ্রেণী:স্বল্পোন্নত দেশ বিষয়শ্রেণী:কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য বিষয়শ্রেণী:১৯৬৪-এ আফ্রিকায় প্রতিষ্ঠিত বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
জেবরা
https://bn.wikipedia.org/wiki/জেবরা
REDIRECT জেব্রা
জিউস
https://bn.wikipedia.org/wiki/জিউস
গ্রিক পুরাণে জিউস ( বা ; প্রাচীন গ্রিক: Ζεύς জ়্‌দেউ্যস্‌, আধুনিক গ্রিক: Δίας, Dias) হলেন "দেবগণ ও মানবজাতির পিতা"। হেসিয়ডের থিওজেনি অনুসারে, তিনি পরিবারের পিতার ন্যায় মাউন্ট অলিম্পাসের অলিম্পিয়ানদের শাসন করতেন। গ্রিক পুরাণে তিনি ছিলেন আকাশ ও বজ্রের দেবতা। গ্রিকদের বিশ্বাসে তিনি দেবরাজ। জিউস নিরন্তর বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে পর্যবেক্ষণ করেন। পসেনিয়াস লিখেছেন, "জিউস স্বর্গের রাজা, এই প্রবাদটি সকলেই জানেন।"Pausanias, 2. 24.2. হেসিয়ডের থিওজেনি গ্রন্থের মতে, জিউস বিভিন্ন দেবতাদের মধ্যে তাঁদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেন। হোমারীয় স্তোত্রাবলি-তেও তাঁকে দেবতাদের প্রধান বলা হয়েছে। হেসিয়ডের থিওজেনি গ্রন্থে তাঁকে "দেবগণ ও মানবজাতির পিতা" বলেও অভিহিত করা হয়েছে। তার প্রতীকগুলি হল বজ্র, ঈগল, ষাঁড় ও ওক। ইন্দো-ইউরোপীয় ঐতিহ্যের এই সকল নিদর্শনগুলি ছাড়াও, এই ধ্রুপদি "মেঘ-সমাবেশকারী" প্রাচীন নিকট প্রাচ্য থেকেও কিছু মূর্তিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছেন। এর উদাহরণ হল রাজদণ্ড। গ্রিক শিল্পীরা মূলত দুটি ভঙ্গিতে জিউসের মূর্তিগুলি নির্মাণ করেছেন: প্রথমত, দণ্ডায়মান অবস্থায় দ্রুত-অগ্রসর হওয়ার ভঙ্গিতে, যেখানে তিনি ডান হাতে বজ্র উঁচিয়ে থাকেন এবং দ্বিতীয়ত রাজসভায় উপবিষ্ট মূর্তিতে। রোমান ও এট্রুস্ক্যান পুরাণে জিউসের সমতুল দেবতারা হলেন যথাক্রমে জুপিটার ও টিনিয়া। জিউস ক্রোনাস ও রেয়ার কনিষ্ঠ সন্তান। সর্বাধিক প্রচলিত মত অনুযায়ী, তিনি হেরাকে বিবাহ করেছিলেন। তবে ডোডোনার ওর‌্যাকল মতে, তার স্ত্রী ছিলেন ডায়োনে: ইলিয়ড মহাকাব্যের বর্ণনা অনুযায়ী, তার ঔরসে ডায়োনের গর্ভে আফ্রোদিতির জন্ম হয়।There are two major conflicting stories for Aphrodite's origins: Hesiod (Theogony) claims that she was "born" from the foam of the sea after Cronos castrated Uranus, thus making her Uranus' daughter; but Homer (Iliad, book V) has Aphrodite as daughter of Zeus and Dione. According to Plato (Symposium 180e), the two were entirely separate entities: Aphrodite Ourania and Aphrodite Pandemos. জিউস তার কামলালসার জন্য প্রসিদ্ধ। এর ফলস্রুতিতে তার অনেক দেবতা ও যোদ্ধা সন্তানের জন্ম হয়। এঁরা হলেন অ্যাথেনা, অ্যাপোলো ও আর্টেমিস, হার্মিস, পার্সেফোনি (ডিমিটারের গর্ভে), ডায়োনিসাস, পার্সেউস, হেরাক্লেস, হেলেন, মিনোস ও মিউজগণ (নিমোসিনের গর্ভে); জিউসের ঔরসে হেরার গর্ভে জন্ম হয় আরেস, হেবে ও হেফাস্টাসের। পৌরাণিক উপাখ্যান thumbnail|250px|left| জিউসের রথ, আলফ্রেড চার্চ রচিত স্টোরিজ ফ্রম দ্য গ্রিক ট্রাজেডিয়ানস গ্রন্থের (১৮৭৯) চিত্রণ জন্ম ক্রোনাসের ঔরসে রিয়ার গর্ভে একাধিক সন্তানের জন্ম হয়: হেস্টিয়া, ডিমিটার, হেরা, হেডিস ও পোসেইদন। কিন্তু জন্মমাত্রেই ক্রোনাস তার সন্তানদের গিলে ফেলতেন। কারণ গাইয়া ও ইউরেনাসের থেকে তিনি জেনেছিলেন যে তিনি যেমন নিজের পিতাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন, তেমনই তার নিজের সন্তানও তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। জিউসের জন্মের পূর্বে রিয়া তাঁকে রক্ষা করার জন্য গাইয়ার সঙ্গে পরামর্শ চান, যাতে ইউরেনাস ও তার সন্তানদের প্রতি কৃত অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি পান ক্রোনাস। রিয়া ক্রিটে জিউসের জন্ম দেন এবং শিশুর কাপড়ে জড়িয়ে একটি পাথর ক্রোনাসের হাতে তুলে দেন। এই পাথরটিই গিলে ফেলেন ক্রোনাস। শৈশব thumb|left|সোনার স্ট্যাটারে অঙ্কিত জিউসের মাথায় লরেল পাতার মুকুট, ল্যাম্পস্যাকাস ৩৬০-৩৪০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ রিয়া জিউসকে ক্রিটের মাউন্ট ইডার একটি গুহায় লুকিয়ে রাখেন। তার শৈশব সম্পর্কে একাধিক পরস্পরবিরোধী কাহিনি প্রচলিত আছে: ১: গাইয়া তাঁকে লালনপালন করেন। ২: অ্যামালথিয়া নামে একটি ছাগল তাঁকে প্রতিপালন করেন। অন্যদিকে একদল সেনা বা ছোটো দেবতা নাচগান, চেঁচামেচি ও বর্শানিক্ষেপে শব্দ সৃষ্টি করেন, যাতে শিশুর কান্না ক্রোনাস না শুনতে পায়। ৩: অ্যাডাম্যান্থিয়া নামে এক নিম্ফ তাঁকে প্রতিপালন করেন। ক্রোনাস যেহেতু পৃথিবী, স্বর্গ ও সমুদ্রের দেবতা ছিলেন, তাই তার কাছ থেকে লুকোতে গিয়ে সেই নিম্ফ একটি দড়ির দোলনায় জিউসকে গাছে ঝুলিয়ে রাখেন, যাতে সে পৃথিবী, সমুদ্র ও আকাশের বাইরে থেকে তার পিতার দৃষ্টির অগোচরে থাকেন। ৪: সিনোসুরা নামে এক নিম্ফ তাঁকে প্রতিপালন করেন। কৃতজ্ঞতাবশত জিউস নক্ষত্রমণ্ডলীতে তাঁকে স্থান দেন। ৫: মেলিসা তাঁকে প্রতিপালন করেন। তিনি জিউসকে ছাগলের দুধ ও মধু খাওয়াতেন। ৬: একটি পশুপালক পরিবার এই মর্মে তাঁকে প্রতিপালন করতে রাজি হয় যে, তাদের ভেড়ার পালে নেকড়েরা কখনও হানা দেবে না। দৈবরাজ্য লাভ thumbnail|150px|right|জিউস, গেটি ভিলা, প্রথম শতাব্দী, অজ্ঞাত শিল্পী বয়ঃপ্রাপ্তির পর জিউস ক্রোনাসকে সেই পাথরটি ওগরাতে বাধ্য করেন যেটি ওম্ফালোস নামক নশ্বর মানুষদের প্রতীক হিসেবে পাইথো পারনাসাসের উপত্যকায় রেখেছিল। তারপর গেলার বিপরীত ক্রমে ক্রোনাসকে তিনি তার ভাইবোনদের ওগরাতে বাধ্য করেন। কোনো কোনো পাঠান্তর থেকে জানা যায়, শিশুগুলিকে ওগরানোর জন্য মেটিস ক্রোনাসকে বমি করার ঔষধ প্রদান করেছিলেন। আবার কোনো কোনো মতে, জিউস ক্রোনাসের পেট চিরে তার ভাইবোনদের উদ্ধার করেছিলেন। এরপর টারটারাসের রক্ষক ক্যাম্পেকে হত্যা করে তিনি ক্রোনাসের ভাই জাইগ্যানেটস, হেক্টনকারস ও সাইক্লোপসদের উদ্ধার করেন। কৃতজ্ঞতাবশত, সাইক্লোপসরা তাঁকে বজ্র ও বিদ্যুৎ প্রদান করেন, যা পূর্বে গাইয়া কর্তৃক লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। জিউস তার ভাইবোন, জাইগ্যানেটস, হেক্টনকারস ও সাইক্লোপসের সহায়তায় ক্রোনাস সহ অন্যান্য টাইটানদের ক্ষমতাচ্যুত করেন। এই ঘটনা টাইটানোমেশি বা টাইটানদের যুদ্ধ নামে পরিচিত। টাইটানদের পরাজিত করে তারা তাঁদের টারটারাস নামে অন্ধকার এক পাতাললোকে নিক্ষেপ করেন। অ্যাটলাস নামে এক টাইটানকে জিউসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শাস্তিস্বরূপ আকাশ ধরে রাখার কাজ দেওয়া হয়। টাইটানদের সঙ্গে যুদ্ধের পর জিউস তার দুই দাদা পসেইডন ও হেডিসের সঙ্গে বিশ্বচরাচর ভাগ করে নেন। জিউস হন আকাশের দেবতা, পসেইডন সমুদ্রের এবং হেডিস মৃতলোক বা পাতালের দেবতা হন। প্রাচীন পৃথিবী গাইয়াকে কেউ দাবি করতে পারেন না। তাই তিনি এই তিন জনেরই নিয়ন্ত্রণাধীন থাকেন। এই কারণেই পসেইডনকে "ভূকম্প-সৃষ্টিকারী" (ভূমিকম্পের দেবতা) বলা হয় এবং হেডিস মৃত মানুষদের উপর নিজ আধিপত্য কায়েম করেন। (পেনথাস দেখুন) টাইটানদের প্রতি জিউসের আচরণ গাইয়াকে ক্ষুব্ধ করে। কারণ টাইটানরা ছিল তার সন্তান। দৈবরাজ্য লাভের পরই জিউসকে তাই গাইয়ার অন্যান্য সন্তান অর্থাৎ টাইফোন ও একিদনা নামে দৈত্যদ্বয়ের সঙ্গে লড়াই করতে হয়। তিনি টাইফোনকে একটি পর্বতের তলায় বন্দী করেন। কিন্তু একিদনা ও তার সন্তানদের মুক্তি দেন। জিউস ও হেরা thumb| বিশালাকার রোমান শ্বেতপাথরে নির্মিত জিউসের আবক্ষমূর্তি, খ্রিষ্টীয় দ্বিতীয় শতাব্দী (ব্রিটিশ মিউজিয়াম)The bust below the base of the neck is eighteenth century. The head, which is roughly worked at back and must have occupied a niche, was found at Hadrian's Villa, Tivoli and donated to the British Museum by John Thomas Barber Beaumont in 1836. BM 1516. (British Museum, A Catalogue of Sculpture in the Department of Greek and Roman Antiquities, 1904). জিউস হেরার ভ্রাতা ও স্বামী। জিউসের ঔরসে হেরার গর্ভে আরেস, হেবে ও হেফাস্টাসের জন্ম হয়। যদিও কোনো কোনো মতে, হেরা একাকীই এই সকল সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। অন্য মতে, ইলিথিয়া ও এরিসও হেরার কন্যা। নিম্ফ ও বিভিন্ন পৌরাণিক নশ্বর রাজবংশীয় নারী ও বালকদের সঙ্গে জিউসের যৌনসম্পর্ক ও প্রণয়কাহিনি প্রসিদ্ধ। অলিম্পিয়ান পুরাণতত্ত্বের মতে, লেটো, ডিমিটার, ডায়োনে ও মাইয়ার সঙ্গেও জিউসের যৌন সম্পর্ক বজায় ছিল। জিউসের প্রণয়ী নশ্বরেরা হলেন সেমেল, আইয়ো, ইউরোপা ও লেডা। (বিস্তারিত বর্ণনার জন্য নিচে দেখুন) একাধিক পুরাণে দেখানো হয়েছে হেরা তার স্বামীয় প্রণয়ীদের প্রতি ঈর্ষাকাতর। এই ঈর্ষাবশত তিনি জিউসের অন্যান্য প্রণয়ী ও তাঁদের সন্তানদের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন। কিছু সময়ের জন্য ইকো নামে এক নিম্ফ অবিরাম কথা বলে হেরার মনোযোগ তার স্বামীর প্রণয়াভিযান থেকে সরিয়ে রাখেন। হেরা এই ছলটি ধরে ফেললে, ইকোকে অভিশাপ দেন যে সে শুধু অন্যের শব্দই প্রতিধ্বনিত করতে পারবে। প্রণয়সঙ্গী ও সন্তানাদি দৈব মাতৃকার গর্ভে <center>মা <center>সন্তানএগাএগিপ্যানHyginus, Fabulae 155 আনাকে* মৈরি (Fates)* আত্রেপোস ক্লোদো ল্যাকেসিস ডিমিটার পার্সিফোনি জ্যাগ্রেউস ডায়োনে বা থেলাসা আফ্রোদিতি গাইয়া† ওরিয়ন মেনস হেরা আরেস ইলিথিয়া এরিস হেবে এয়োস এরসা ক্যারি Eris Limos (aka Limus) Leto Apollo Artemis Maia Hermes Metis Athena Mnemosyne Muses (Original three) Aoide Melete Mneme Muses (Later nine) Calliope Clio Erato Euterpe Melpomene Polyhymnia Terpsichore Thalia Urania Persephone Zagreus Melinoe Selene Ersa Nemean Lion Pandia Themis Astraea Nymphs of Eridanos Nemesis Horae First Generation Auxo Carpo Thallo Second Generation Dike Eirene Eunomia Third generation Pherusa Euporie Orthosie Moirae (Fates)* Atropos Clotho Lachesis নশ্বর/নিম্ফ/অন্যান্য মায়ের গর্ভে <center>Mother <center>Children Aegina Aeacus Alcmene Heracles (Hercules) Antiope Amphion Zethus Callisto Arcas Carme Britomartis Danaë Perseus Elara Tityas Electra Dardanus Iasion Harmonia Europa Minos Rhadamanthys Sarpedon Eurynome Charites(Graces) Aglaea Euphrosyne Thalia Himalia Kronios Spartaios Kytos Iodame Thebe Io Epaphus Keroessa Lamia Laodamia Sarpedon Leda Polydeuces (Pollux) Castor Helen of Sparta (of Troy) Maera Locrus Niobe Argus Pelasgus Olympias Alexander III of Macedon Othreis Meliteus Plouto Tantalus Podarge Balius Xanthus Pyrrha Hellen Semele Dionysus Taygete Lacedaemon Thalia Palici Unknown mother Litae Unknown mother Tyche Unknown mother Ate *The Greeks variously claimed that the Fates were the daughters of Zeus and the Titaness Themis or of primordial beings like Nyx, Chaos or Anake. † He is described as being "Earth-born" and was gestated buried beneath the ground; this is Gaia's domain, though she had no direct involvement in his birth or development. Other versions of his parentage include a version of the former excluding Poseidon and one with solely Poseidon and Euryale as his parents. পাদটীকা অতিরিক্ত পাঠ Burkert, Walter, (1977) 1985. Greek Religion, especially section III.ii.1 (Harvard University Press) Cook, Arthur Bernard, Zeus: A Study in Ancient Religion, (3 volume set), (1914–1925). New York, Bibilo & Tannen: 1964. Volume 1: Zeus, God of the Bright Sky, Biblo-Moser, June 1, 1964, (reprint) Volume 2: Zeus, God of the Dark Sky (Thunder and Lightning), Biblo-Moser, June 1, 1964, Volume 3: Zeus, God of the Dark Sky (earthquakes, clouds, wind, dew, rain, meteorites) Druon, Maurice, The Memoirs of Zeus, 1964, Charles Scribner's and Sons. (tr. Humphrey Hare) Farnell, Lewis Richard, Cults of the Greek States 5 vols. Oxford; Clarendon 1896–1909. Still the standard reference. Farnell, Lewis Richard, Greek Hero Cults and Ideas of Immortality, 1921. Graves, Robert; The Greek Myths, Penguin Books Ltd. (1960 edition) Mitford,William, The History of Greece, 1784. Cf. v.1, Chapter II, Religion of the Early Greeks Moore, Clifford H., The Religious Thought of the Greeks, 1916. Nilsson, Martin P., Greek Popular Religion, 1940. Nilsson, Martin P., History of Greek Religion, 1949. Rohde, Erwin, Psyche: The Cult of Souls and Belief in Immortality among the Greeks, 1925. Smith, William, Dictionary of Greek and Roman Biography and Mythology, 1870, Ancientlibrary.com , William Smith, Dictionary: "Zeus" Ancientlibrary.com বহিঃসংযোগ Greek Mythology Link, Zeus stories of Zeus in myth Theoi Project, Zeus summary, stories, classical art Theoi Project, Cult Of Zeus cult and statues Photo: Pagans Honor Zeus at Ancient Athens Temple from National Geographic * বিষয়শ্রেণী:ইলিয়ডের দেবতা বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দেবতা বিষয়শ্রেণী:গ্রিক পুরাণ বিষয়শ্রেণী:দ্বাদশ অলিম্পিয়ান বিষয়শ্রেণী:পৌরাণিক রাজা বিষয়শ্রেণী:রক্ষক দেবতা বিষয়শ্রেণী:আকাশ ও আবহাওয়ার দেবতা বিষয়শ্রেণী:বজ্রের দেবতা বিষয়শ্রেণী:ওর‌্যাকুলার দেবতা বিষয়শ্রেণী:দেবতাদের নাম বিষয়শ্রেণী:গ্রিক পুরাণের চরিত্র বিষয়শ্রেণী:গ্রিক পুরাণের রাজা বিষয়শ্রেণী:সূর্য দেবতা
জিম্বাবুয়ে
https://bn.wikipedia.org/wiki/জিম্বাবুয়ে
জিম্বাবুয়ে (ইংরেজি ভাষায়; Republic of Zimbabwe) দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। দেশটি এর দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত ১৪শ শতকে পাথরে নির্মিত মহান জিম্বাবুয়ে শহরের নামে নামকরণ করা হয়েছে। জাম্বেজি নদীর উপর অবস্থিত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত এবং বন্য জীবজন্তুর জন্য দেশটি বিখ্যাত। জিম্বাবুয়ের জনগণকে দুইটি প্রধান জাতিগত ও ভাষাগত দলে ভাগ করা যায় --- ন্‌দেবেলে ও শোনা ভাষা। ন্‌দেবেলেরা প্রধানত দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বাস করে। জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারে। শহরটি একটি বাণিজ্যিক খামারপ্রধান জেলার কেন্দ্রে অবস্থিত। জিম্বাবুয়েতে ২০০০ বছর ধরে মানুষের বাস। বর্তমান জিম্বাবুয়ে এলাকাটি অতীতে একাধিক বৃহত্তর আফ্রিকান রাজত্বের কেন্দ্র ছিল, যাদের মধ্যে আছে মহান জিম্বাবুয়ে, মুতাপা ও রোজওয়ি সাম্রাজ্য। ১৮০০-এর দশক থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে ব্রিটিশ উপনিবেশ দক্ষিণ রোডেশিয়া নামে পরিচিত ছিল। ১৯৬৫ সালে এখানকার শ্বেতাঙ্গ অধিবাসীরা রোডেশিয়াকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করলেও যুক্তরাজ্য এটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৮০ সালে দেশের সংখ্যাগুরু কৃষ্ণাঙ্গ জনগণ জিম্বাবুয়ে নামে দেশটিকে স্বাধীন করে। ইতিহাস রাজনীতি থাম্ব|386x386পিক্সেল|হারারে, জিম্বাবুয়ের রাজধানী ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত স্বাধীন জিম্বাবুয়ের দাবীতে রোডেশিয়ান বুশ যুদ্ধ বা জিম্বাবুয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়। ১৯৮০ সালে ল্যাংকাস্টার হাউস এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়। ১৯৮০ সালের পর থেকে ৩৭ বছর ধরে ক্ষমতাসীন রবার্ট মুগাবে। আশির দশকের শুরুতে যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীন হয় আফ্রিকার এ দেশটি। তখন থেকেই ক্ষমতায় আছেন রবার্ট মুগাবে। বেশ কয়েক বছর ধরে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। কিন্তু ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ ছিলেন তিনি। ৬ নভেম্বর ২০১৭, ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে বরখাস্ত এবং ক্ষমতাসীন দল জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন-প্যাট্রিওটিক ফ্রন্ট (জেডএএনইউ-পিএফ) থেকে বহিষ্কার করেন মুগাবে। এর ফলে সামরিক অভ্যুত্থানের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণ এখন দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল অর্থনীতি জিম্বাবুয়ে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম প্লাটিনাম উৎপাদক দেশ (দক্ষিণ আফ্রিকা ও রাশিয়ার পর) । জনসংখ্যা উপাত্ত ২০০৯ সাল পর্যন্ত লোকসংখ্যা ১২,৫২৩,০০০ জন । জিম্বাবুয়েতে খৃষ্টধর্মাবলম্বীরা সংখ্যাগরিষ্ট । সংস্কৃতি খেলাধুলা হারারে শহরে অবস্থিত ৬০,০০০ আসনবিশিষ্ট জিম্বাবুয়ে জাতীয় ক্রীড়া স্টেডিয়াম দেশের প্রধান স্টেডিয়াম। ফুটবল খেলার জন্য এই স্টেডিয়ামটি ব্যবহৃত হয়। হারারে শহরে হারারে স্পোর্টস ক্লাব এর নিজস্ব ক্রিকেট মাঠ রয়েছে , যেখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বুলাওয়ে শহরে কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব এর নিজস্ব ক্রিকেট মাঠ আন্তর্জাতিক আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যবহৃত হয়। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি Parliament of Zimbabwe—official government site Zimbabwe Government Online—official government site and mirror site রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য The OneWorld Guide to Zimbabwe In-Depth: Zimbabwe’s humanitarian crisis - IRIN Country Profile from BBC News Zimbabwe from UCB Libraries GovPubs সংবাদ The Zimbabwean The Zimbabwe Guardian Zimbabwe Humanitarian news and analysis from IRIN Zimbabwe Metro পর্যটন, পরিবেশ, এবং সংস্কৃতি ZimConservation —News and opinions about the wildlife and environment of Zimbabwe Zimbabwe Urban Culture—Site Promoting Modern Zimbabwe Youth arts বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:জি১৫ রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৮০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:সামরিক একনায়কতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:স্থলবেষ্টিত দেশ বিষয়শ্রেণী:প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
প্রাণিবিজ্ঞান
https://bn.wikipedia.org/wiki/প্রাণিবিজ্ঞান
প্রাণিবিজ্ঞান নামক জীববিজ্ঞানের শাখায় মানুষ সহ অন্য সব প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করা হয়। জীববিদ্যা বা জীববিজ্ঞান যে শাখায় প্রাণীর বিষয়ে সম্যক আলোচনা ও বিভিন্ন তথ্য পরিবেশিত হয় তাকে প্রাণিবিজ্ঞান বা প্রাণিবিদ্যা বলে। প্রাণিবিদ্যা বা জীববিজ্ঞান জীববিজ্ঞানের শাখা যা প্রাণীদের শরীরে অধ্যয়নরত গঠন ভ্রূণবিজ্ঞান বিবর্তন শ্রেণিবিন্যাসের অভ্যাস এবং জীববন্ত এবং বিলুপ্ত উভয় প্রাণীর বণ্টন এবং কীভাবে তারা তাদের বাস্তুতন্ত্রের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে। শব্দটি প্রাচীন, গ্রিক অভিধান থেকে উদ্ভূত হয়েছে ζῷον, zōion, ইত্যাদি। প্রাণী এবং λόγος, logos, ইত্যাদি। "জ্ঞান অধ্যয়ন" এর ক্ষেত্রে প্রানীবিজ্ঞান-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। ইতিহাস ডারউইন প্রাচীন ইতিহাস thumb|গিসনার কনরেড, আধুনিক প্রাণিবিদ্যার জনক প্রাণিবিদ্যা ইতিহাস প্রাচীন থেকে আধুনিক সময়ে পশু রাজত্বের গবেষণা ট্রেস। যদিও একক সুষম ক্ষেত্র হিসাবে প্রাণিবিদ্যা সম্পর্কে ধারণাটি উদ্ভূত হয়েছিল, তবে প্রাচীন গ্রিক রোমান জগতে অ্যারিস্টটল ও গ্যালেনের জৈবিক কাজগুলিতে ফিরে আসার ফলে প্রাকৃতিক ইতিহাস থেকে উদ্ভাবিত প্রাণিকবিদ্যাগুলি উদ্ভূত হয়েছিল। এই প্রাচীন কাজটি মুসলিম চিকিংসকদের মধ্য থেকে মধ্যযুগ এবং আলবার্টস ম্যাগনাসের মতো পণ্ডিতদের দ্বারা আরও উন্নত করা হয়েছিল। নবজাগরণের সময় এবং আধুনিক যুগে প্রাণবৈচিত্র্যের একটি নূতন আগ্রহ এবং অনেক উপন্যাসের আবিষ্কারের মাধ্যমে ইউরোপে ভূতাত্ত্বিক চিন্তাধারার বিপ্লব ঘটে। এই আন্দোলনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ভেসালিয়াস ও উইলিয়াম হার্ভি। তিনি কার্ল লিনাইয়াস ও বফনের মতো শারীরবৃত্তীয় ও প্রকৃতিবিদদের গবেষণামূলক পর্যবেক্ষণ এবং জীবনধারা এবং জীবাশ্ম রেকর্ডের পাশাপাশি জীবের উন্নয়ন ও আচরণের শ্রেণিবিন্যাস শুরু করেছিলেন। মাইক্রোস্কোপি সূর্যালোকের পূর্বে অজানা বিশ্বের কোষ তত্ত্বের ভিত্তি স্থাপন করেছে। প্রাকৃতিক ধর্মতত্ত্বের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব আংশিকভাবে যান্ত্রিক দর্শনের উত্থানের প্রতিক্রিয়া প্রাকৃতিক ইতিহাসের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে (যদিও এটি নকশা থেকে যুক্তিতে প্রবেশ করে)। ১৮ তম ও ঊনবিংশ শতাব্দী জুড়ে জীববিজ্ঞান একটি ক্রমবর্ধমান পেশাদারী বৈজ্ঞানিক শৃঙ্খলা হয়ে ওঠে। এক্সপ্লোরার প্রকৃতিবিদ যেমন আলেকজান্ডার ভন হুম্বল্ট্ট্ জীবজগৎ এবং তাদের পরিবেশের মধ্যে পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়া পরীক্ষা করে এবং এই সম্পর্কগুলি ভূগোলের উপর ভিত্তি করে জীবজগতে ইকোলজি এবং এথোলজির ভিত্তি স্থাপন করে। প্রকৃতিবাদীরা মূলত প্রত্যাখ্যান শুরু করে এবং বিলুপ্তির এবং প্রজাতির পরিবর্তনের গুরুত্ব বিবেচনা করে। সেল তত্ত্ব জীবনের মৌলিক ভিত্তি একটি নতুন দৃষ্টিকোণ প্রদান। পোস্ট-ডারউইন গবেষণা প্রাণিবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিশুদ্ধ প্রাণিবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা: অঙ্গসংস্থান শারীরস্থান শারীরবিদ্যা কোষবিদ্যা কলাস্থানবিদ্যা ভ্রূণবিদ্যা বংশগতিবিদ্যা বাস্তব্যবিদ্যা / বাস্তুবিদ্যা শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা ফলিত প্রাণিবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা: মৎস্য চাষ মৌমাছি পালন রেশম চাষ চিংড়ি চাষ বিশেষিত প্রাণিবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা: ফিতাকৃমিবিদ্যা সুতাকৃমিবিদ্যা পতঙ্গবিদ্যা মাৎস্যবিদ্যা পাখিবিদ্যা স্তন্যপায়ীবিদ্যা আরও দেখুন অ্যানিম্যাল সাইন্স, গৃহপালিত পশুদের বিজ্ঞান অ্যাস্ট্রোবায়োলজি প্রাণিবিজ্ঞানীদের তালিকা প্রানিবিজ্ঞানের সূচি প্রানিবিজ্ঞানের সময়রেখা প্রানিবিজ্ঞানের বিভাজন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Books on Zoology at Project Gutenberg Online Dictionary of Invertebrate Zoology বিষয়শ্রেণী:জীববিজ্ঞান বিষয়শ্রেণী:প্রাণিবিজ্ঞান বিষয়শ্রেণী:মূল বিষয়ের নিবন্ধ বিষয়শ্রেণী:জীববিজ্ঞানের শাখা
ছাতা (ছত্রাক)
https://bn.wikipedia.org/wiki/ছাতা_(ছত্রাক)
frame|alt=Time-lapse photography sequence of a peach becoming progressively discolored and disfigured|Mold growth covering a decaying peach. The frames were taken approximately 12 hours apart over a period of six days. thumb|Mold growing on a clementine thumb|Spinellus fusiger growing on the mushroom Mycena haematopus thumb|ছাতাযুক্ত টমাটো ছাতা একপ্রকার নিম্ন শ্রেণীর ছত্রাক। এগুলো সাধারণত আর্দ্র স্থানে জন্মায়, যেমন রুটি,দই বা দধি, অনেক দিনের পুরানো জুতা, ভেজা কাপড় ইত্যাদি। শ্রেণীবিন্যাস আবাস স্থল খাদ্য কোষীয় গঠন জীবন চক্র ব্যবহারিক প্রয়োগ আরোও দেখুন মাইকোরাইজা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ The EPA's guide to mold বিষয়শ্রেণী:ছত্রাক বিষয়শ্রেণী:জীব
যুক্তরাষ্ট্র
https://bn.wikipedia.org/wiki/যুক্তরাষ্ট্র
redirect মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র
হলিউড
https://bn.wikipedia.org/wiki/হলিউড
হলিউড ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস এঞ্জেলেস শহরের একটি এলাকা। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র জগতের প্রাণকেন্দ্র। ইতিহাস thumb|হোটেল গ্লেন-হলি, এটি হলিউডের প্রথম হোটেল। কোণায় রাস্তাটি বর্তমানে ইওক্কা স্ট্রিট ১৮৫৩ সাল থেকে এখানে মানববসতির স্থান পাওয়া যায়। ১৮৭০ সাল থেকে এই এলাকায় কৃষিজমি তৈরির কারণে জনসমাগম বাড়তে থাকে। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:হলিউড বিষয়শ্রেণী:ক্যালিফোর্নিয়ার সংস্কৃতি বিষয়শ্রেণী:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র মাধ্যম
ইহুদি গণহত্যা
https://bn.wikipedia.org/wiki/ইহুদি_গণহত্যা
ইউরোপে ইহুদি গণহত্যা ( দ্য হলোকস্ট্‌; হাশোয়া) হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের উপর চালানো গণহত্যা। হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি পার্টির পরিচালনায় জার্মান নাৎসি সামরিক বাহিনী ইউরোপের তদানীন্তন ইহুদি জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি অংশকে এবং আরও কিছু সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বন্দী শিবির ও শ্রম শিবিরে নির্বিচারে হত্যা করে। আনুমানিক ষাট লক্ষ ইহুদি এবং আরও অনেক সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মানুষ প্রাণ দেয়। হিটলারের বাহিনী পঞ্চাশ লক্ষ ইহুদি ছাড়াও সোভিয়েত যুদ্ধবন্দী, সাম্যবাদী, রোমানী ভাষাগোষ্ঠীর (যাযাবর) জনগণ, অন্যান্য স্লাভীয় ভাষাভাষী জনগণ, প্রতিবন্ধী, সমকামী পুরুষ এবং ভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতাদর্শের মানুষদের ওপর এই অমানবিক গণহত্যা পরিচালনা করে। নাৎসিরা এর নাম দিয়েছিল "ইহুদি প্রশ্নের চরম উপসংহার"। নাৎসি অত্যাচারের সকল ঘটনা আমলে নিলে সর্বমোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে নব্বই লক্ষ থেকে এক কোটি দশ লক্ষের মত। অত্যাচার ও গণহত্যার এসব ঘটনা বিভিন্ন পর্যায়ে সংঘটিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর অনেক আগেই নাগরিক সমাজ থেকে ইহুদিদের উৎখাতের জন্য জার্মানিতে আইন প্রণয়ন করা হয়। জনাকীর্ণ বন্দী শিবিরে রাজনৈতিক ও যুদ্ধবন্দীদেরকে ক্রীতদাসের মতো কাজে লাগাতো যারা পরে অবসন্ন হয়ে রোগভোগের পর মারা যেত। জার্মানিতে নাৎসিদের উত্থানকে তৃতীয় রাইখ ("তৃতীয় রাজ্য") বলা হয়। নাৎসি জার্মানি তখন পূর্ব ইউরোপের কিছু এলাকা দখল করেছে। তারা সেখানে বিরুদ্ধাচরণকারী ও ইহুদিদের গণহারে গুলি করে হত্যা করে। ইহুদি এবং রোমানি ভাষাগোষ্ঠীর লোকদের তারা ধরে নিয়ে গ্যাটোতে রাখে। গেটো একধরনের বস্তি এলাকা যেখানে গাদাগাদি করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে এসব মানুষদেরকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হত। তারপর গেটো থেকে তাদেরকে মালবাহী ট্রেনে করে শত শত মাইল দূরের বধ্যশিবিরগুলোতে নিয়ে যেত। মালবাহী ট্রেনের পরিবহনেই অধিকাংশ মারা পড়ত। যারা বেঁচে থাকত তাদেরকে গ্যাস কক্ষে পুড়িয়ে হত্যা করা হত। তখনকার জার্মানির আমলাতন্ত্রের সকল শাখা সর্বাত্মকভাবে গণহত্যায় জড়িত ছিল। একজন ইহুদি গণহত্যা বিশেষজ্ঞ বলেছেন তারা জার্মানিকে একটি 'নরঘাতক রাষ্ট্রে' পরিণত করেছিল। চিত্রে ইহুদি গণহত্যা আরও দেখুন আনা ফ্রাঙ্ক তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ বিষয়শ্রেণী:পরিকল্পিত গণহত্যা বিষয়শ্রেণী:ইহুদী গণহত্যা বিষয়শ্রেণী:১৯৪২-এ গণহত্যা
শৃগাল
https://bn.wikipedia.org/wiki/শৃগাল
REDIRECT শিয়াল
জাগুয়ার
https://bn.wikipedia.org/wiki/জাগুয়ার
right|thumb|জাগুয়ার জাগুয়ার (Panthera onca) হল চারটি বর্তমান বাঘ জাতীয় "বড় বিড়াল" (Panthera গণের সদস্য) গুলির একটি, অন্য তিনটি হল বাঘ, সিংহ ও চিতাবাঘ। জাগুয়ার চিতা ও চিতাবাঘের মতই গায়ে ছাপওয়ালা। তবে জাগুয়ার এদের থেকে অনেক বড় ও বলিষ্ঠ। জাগুয়ার শুধু আমেরিকা মহাদেশীয় ভূখণ্ডে দেখতে পাওয়া যায় (দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকো)। খাদ্য এদের প্রধাণ খাদ্য দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন স্তন্যপায়ী ও সরীসৃপ। শোনা যায় এরা ৮০ প্রজাতিরও বেশি প্রাণী শিকার করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, কচ্ছপ, বানর, হরিণ, টাপির, পেকারি, স্লথ, কুমির জাতীয় প্রাণী কেইম্যান, এবং অ্যানাকোন্ডা ও অন্যান্য সাপ। ছবি গ্যালারী তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ People and Jaguars a Guide for Coexistence Felidae Conservation Fund বিষয়শ্রেণী:দক্ষিণ আমেরিকার প্রাণিকুল বিষয়শ্রেণী:১৭৫৮-এ বর্ণিত স্তন্যপায়ী বিষয়শ্রেণী:জাগুয়ার বিষয়শ্রেণী:শীর্ষ খাদ্যশিকারী প্রাণী বিষয়শ্রেণী:প্যানথেরা বিষয়শ্রেণী:কার্ল লিনিয়াস কর্তৃক নামকরণকৃত ট্যাক্সা
জাকার্তা
https://bn.wikipedia.org/wiki/জাকার্তা
thumb|right জাকার্তা ();),,ইন্দোনেশীয় ভাষায় উচ্চারণকৃত: . যা দাপ্তরিক ভাবে জাকার্তার বিশেষ রাজধানী এলাকা() নামে পরিচিত, হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। এটি জাকার্তা একটি প্রদেশের অন্তর্গত এবং পৌর এলাকার জনবহুল জায়গার মধ্যে একটি। জাকার্তা জাভা দ্বীপের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। জাকার্তা ইন্দোনেশিয়ার অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। এটির প্রদেশের সমমর্যাদা সম্পন্ন অবস্থা আছে যার আয়তন । ২০২০ অনুসারে ইহার জনসংখ্যা ১০,৫৬২,০৮৮। জাকার্তা মহানগরীর আয়তন তার মধ্যে বোগর, দিপক, টাংগেরাং, দক্ষিণ টাংগেরাং এবং বেকাসির মতো উপশহর অন্তর্ভুক্ত যার মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন কোটি। জাকার্তা থেকে বোর্নিও দ্বীপেের পূর্ব প্রান্তের একটি স্থান নুসান্তারায় রাজধানী সরিয়ে নিতে বিল পাস করেছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। এটি দেশটির উত্তর কালিমানতান প্রদেশে অবস্থিত। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দেশটির হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে জাকার্তা থেকে বোর্নিও দ্বীপে রাজধানী স্থানান্তর করার বিল পাস হয়। নাম এবং ব্যুৎপত্তিগত শব্দতত্ত্ব ইতিহাস প্রারম্ভিক উপনিবেশ যুগ উপনিবেশ যুগ স্বাধীনতা যুগ প্রশাসন জাকার্তার প্রশাসনিক বিভাগ সমূহ + জাকার্তার শহর/পৌর এলাকা সমূহ (Kota Administrasi/Kotamadya)শহর/অঞ্চলঅঞ্চল (কিঃমিঃ২)মোট জনসংখ্যা (২০১০ আদমশুমারি)মোট জনসংখ্যা(২০১৪)জনসংখ্যার ঘনত্ব(প্রতি কিঃমিঃ২)২০১০ সালেজনসংখ্যার ঘনত্ব(প্রতি কিঃমিঃ২)২০১৪ সালে দক্ষিণ জাকার্তা (Jakarta Selatan) ১৪১.২৭ ২,০৫৭,০৮০ ২,১৬৪,০৭০ ১৪,৫৬১ ১৫,৩১৯ পূর্ব জাকার্তা (Jakarta Timur) ১৮৮.০৩ ২,৬৮৭,০২৭ ২,৮১৭,৯৯৪ ১৪,২৯০১৪,৯৮৭ কেন্দ্রীয় জাকার্তা (Jakarta Pusat) ৪৮.১৩ ৮৯৮,৮৮৩ ৯১০,৩৮১ ১৮,৬৭৬১৮,৯১৫ পশ্চিম জাকার্তা (Jakarta Barat) ১২৯.৫৪ ২,২৭৮,৮২৫ ২,৪৩০,৪১০ ১৭,৫৯২১৮,৭৬২ উত্তর জাকার্তা (Jakarta Utara) ১৪৬.৬৬ ১,৬৪৫,৩১২ ১,৭২৯,৪৪৪ ১১,২১৯১১,৭৯২ Thousand Islands (Kepulauan Seribu) ৮.৭ ২১,০৭১ ২৩,০১১ ২,৪৪২২,৬৪৫ </center> সরকার পৌর আর্থিক সম্পর্কিত {| class="wikitable" style="text-align:center; width:40%;" |+ জাকার্তা শহর অর্থনীতি: ২০০৭ – ২০১২ (রুপি ট্রিলিয়ন)!Year !width="70"|রাজস্ব !width="70"|ব্যয় |- style="text-align:center;" |২০০৮ প্রকৃত || ১৮.৭ || ১৮.৭ |- style="text-align:center;" |২০০৮ প্রকৃত || ৩২.৯ || ১৬.৪ |- style="text-align:center;" |২০০৯ প্রকৃত|| ২৩.৭ || ১৮.৬ |- style="text-align:center;" |২০১০ প্রকৃত|| ২৬.৮ || ২১.৬ |- style="text-align:center;" |২০১১ প্রকৃত|| ৩১.৮ || ৩১.৭ |- style="text-align:center;" |২০১২ প্রকৃত|| ৪১.৪ || ৪১.৪ |} ইন্দোনেশিয়া পরিসংখ্যান ব্যুরো: Jakarta in Figures ভূগোল ও জলবায়ু ভূগোল থাম্ব|জাকার্তায় অবস্থিত আনকোল সৈকত জাকার্তা সমূদ্রের ছিলিওয়াং নদীর মুখে জাভা উপকূলের উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত। জলবায়ু সংস্কৃতি জাদুঘর রন্ধনপ্রণালী মিডিয়া জাকার্তায় অনেক খবরের প্রকাশনা,টেলিভিশন এবং রেডিও চ্যানেল রয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকার মধ্যে রয়েছে দৈনিক, ব্যবসায়িক এবং ডিজিটাল পত্রিকা,যা জাকার্তার উপর ভিত্তি করে চলছে। দৈনিক পত্রিকা গুলোর মধ্যে রয়েছে কম্পাস, কোরান টেম্পল, মিডিয়া ইন্দোনেশিয়া, রিপাবলিকা,সুয়ারা পেমবারুয়ান,সেপুতার ইন্দোনেশিয়া,সুয়ারা কারইয়াল,সিনার হারাপান,ইন্দো পস,জার্নাল ন্যাশনাল, হারিয়ান পেলিটা। ইংরেজি ভাষার দৈনিক পত্রিকাগুলোও প্রতিদিন প্রকাশিত হয়ে থাকে, উদাহরণস্বরুপ দি জাকার্তা পোস্ট এবং দি জাকার্তা গ্লোব। চাইনিজ ভাষার পত্রিকাগুলো হল ইন্দোনেশিয়া শাং বাও(印尼商报), হারিয়ান ইন্দোনেশিয়া (印尼星洲日报) এবং গুয়ো জি রি বাও (国际日报)। জাপানি ভাষার একমাত্র পত্রিকা হল দি ডেইলি জাকার্তা শিমবুন(じゃかるた新聞)। জাকার্তার আরো দৈনিক পত্রিকা রয়েছে, যেমন পস কোটা,ওয়ারটা কোটা,কোরান জাকার্তা,আঞ্চলিক পাঠকদের জন্য বেরিটা কোটা; বিসনিস ইন্দোনেশিয়া,ইনভেস্টর ডেইলি,কোনটান,হারিয়ান নেরাকা(ব্যবসায়ী খবর), এছাড়াও টপ স্কোর(Top Skor) সকার(খেলার খবর)। জাকার্তায় রয়েছে রাষ্ট্রীয় গণ মাধ্যম টিভিআরআই (TVRI) এবং বেসরকারি জাতীয় টেলিভিশন গুলোর প্রধান কার্যালয়। বেসরকারি টিভি গুলোর মধ্যে রয়েছে আরসিটিআই (RCTI), ট্রান্স৭ (Trans 7|TV7), টিভি ওয়ান(TV ONE), মেট্রো টিভি(Metro TV), এসসিটিভি(SCTV), গ্লোবাল টিভি(Global TV), এন টিভি(ANTV), ট্রান্স টিভি(Trans TV), কমপাস টিভি(Kompas TV), এমএনসি টিভি(MNCTV), ইন্দোশিয়ার(Indosiar), NET. এবং আর টিভি(RTV)। জাকার্তায় আঞ্চলিক টিভি চ্যানেলও রয়েছে যেমন জাক টিভি(JAK TV), ও টিভি(O TV), এলসিনটা টিভি(Elshinta TV) and ধাই টিভি ইন্দোনেশিয়া (DAAI TV)। শহরটি দেশের প্রধান পরিশোধ ভিত্তিক সেবার কেন্দ্রবিন্দু। জাকার্তায় ব্যাপক পরিসরে কেবল টিভি চ্যানেল রয়েছে,এগুলোর মধ্যে ফাস্ট মিডিয়া এবং টেলকম ভিশন। জাকার্তায় স্যাটেলাইট টেলিভিশন(DTH) এখনো অনেক স্বীকৃতি লাভ করেছে। বিশিষ্ট বিনোদন সেবা গুলোর মধ্যে রয়েছে ইন্দোভিশন(Indovision), ওকেভিশন(Okevision),ইয়েস টিভি(Yes TV),ট্রান্সভিশন(Transvision), এবং আয়োরা টিভি(Aora TV)। অনেক টিভি স্টেশন রয়েছে যেগুলো এনালগ কিন্তু এখন কিছু স্টেশন সরকারি পরিবর্তনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিজিটাল সংকেতে(DVB-T2) পরিবর্তন করছে। টেলিভিশন স্টেশনচ্যানেলপ্রধান কার্যালয়ভাষাঅঞ্চলের দেশজাতীয় সম্প্রচার টিভিআই(TVRI) ৩৯ UHF সিনায়ান, কেন্দ্রীয় জাকার্তা ইন্দোনেশীয় ভাষা ট্রান্স টিভি ২৮ UHF মামপাং প্রাপাতান, দক্ষিণ জাকার্তা ট্রান্স ৭ ৪৯ UHF মামপাং প্রাপাতান,দক্ষিণ জাকার্তা আরসিটিআই ৪৩ UHF কেবন জেরুক, পশ্চিম জাকার্তা আইনিউজ টিভি ৩০ UHF MNC প্লাজা, [[কেবন সিরিহ, কেবন সিরিহ, মেনতেং, কেন্দ্রীয় জাকার্তা মেট্রো টিভি ৫৭ UHF কেবন জেরুক, পশ্চিম জাকার্তা নেট. ২৭ UHF কুনিনগান, দক্ষিণ জাকার্তা ইন্দোনেশিয়ার ৪১ UHF ধান মগত, পশ্চিম জাকার্তা এসসিটিভি ৪৫ UHF সিনায়ান সিটি, দক্ষিণ জাকার্তা এন টিভি ৪৭ UHF কুনিনগান, কেন্দ্রীয় জাকার্তা গ্লোবাল টিভি ৫১ UHF কেবন টিভি জেরুক, পশ্চিম জাকার্তা টিভি ওয়ান ৫৩ UHF পুলো গাদাং, পূর্ব জাকার্তা এমএনসি টিভি ৩৭ UHF কেবন সিরিহ, কেন্দ্রীয় জাকার্তা রাজাওয়ালি টেলিভিশন ২৩ UHF [কুনিনগান, কেন্দ্রীয় জাকার্তা কমপাস টিভি ২৫ UHF পালমেরাহ, পূর্ব জাকার্তাআঞ্চলিক সম্প্রচার জাকটিভি ৫৫ UHF কেবায়োরান বারু, কেন্দ্রীয় জাকার্তা ইন্দোনেশীত ভাষা ২৮ UHF পালমেরাহ, পশ্চিম জাকার্তা ও চ্যানেল ৩৩ UHF দক্ষিণ জাকার্তা ধাই টিভি ইন্দোনেশিয়া ৫৯ UHF পালমেরাহ, পশ্চিম জাকার্তা আইএন টিভি ২২ UHF তোমাং, পশ্চিম জাকার্তা জাকার্তায় বাহান্নটি FM ব্যান্ড রেডিও স্টেশন সহ পঁচাত্তরটি রেডিও স্টেশন রয়েছে এবং তেইশটি রেডিও স্টেশন রয়েছে যেগুলো AM ব্যান্ডে সম্প্রচারিত করে। অর্থনীতি মূল নিবন্ধ:জাকার্তার অর্থনীতি বাজার thumb|right|তামান এংগ্রিক মল, পশ্চিম জাকার্তা জাকার্তা জাতির শপিংয়ের কেন্দ্রস্থল এবং বাজার করার জন্য দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে ভাল জায়গা গুলোর মধ্যে একটি। জাকার্তায় শহটির বিভিন্ন ধরনের দোকান এবং ঐতিহ্যগত বাজার রয়েছে। সর্বমোট ৫৫০ হেক্টর নিয়ে একটি একক শহরে জাকার্তার বিশ্বের সর্ববৃহৎ শপিং মলের জায়গা রয়েছে। প্রত্যেক বছর জাকার্তার ২০১২ সালে প্রায় ৭৩ অংশগ্রহণকারী শপিং সেন্টারের উদ্‌যাপন উপলক্ষে জুন এবং জুলাই মাসে "জাকার্তা বৃহৎ বিক্রয়" উদযাপিত হয়। শহরটি মানুষের খুব ক্রয় ক্ষমতার মধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ব্যান্ডগুলোর প্রাচুর্যের দ্বারা পূর্ণ হয়। মল যেমন প্লাজা ইন্দোনেশিয়া, গ্র‍্যান্ড ইন্দোনেশিয়া, শপিং টাউন,প্লাজা সিনায়ান,সিনায়ান সিটি এবং প্যাসিফিক প্লেস বিভিন্ন ধরনের বিলাসবহুল ব্র‍্যান্ড বাছাই করার সুবিধা প্রধান করে। মল টামান এংগ্রিক এবং সিপুটরা ওয়াল্ড জাকার্তা যেগূলো জাকার্তায় শপিং মলের নতুন ধারণা বহণ করে... সড়ক স্থাপনা পানি সরবরাহ দৃশ্য স্থাপনা জনসংখ্যা সমগ্র ইন্দোনেশিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সুবিধার জন্য জাকার্তা সবার আগে, ফলে জাকার্তা অভিবাসী আধিক্য শহরে পরিনত হয়েছে। ১৯৬১ সালের আদম শুমারিতে দেখা গেছে যে শহরের জনসংখ্যার ৫১% মাত্র জাকার্তায় জন্মগ্রহণ করেছেCybriwsky and Ford, City profile – Jakarta, 2001, যাতে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির প্রভাব উপেক্ষা করা হয়েছে। ১৯৬১ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে জাকার্তার জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায় এবং ১৯৮০-১৯৯০ সময়কালে শহরের জনসংখ্যা বার্ষিক বৃদ্ধি ৩.৭% ছিল।Jabotabek, the Jakarta metropolitan area ২০১০ সালের আদমশুমারিতে প্রায় ৯.৫৮ মিলিয়ন জনসংখ্যা গণনা করা হয়েছে, এটি সরকারের অনুমানের চেয়েও ভাল ছিল। ১৯৭০ সালে জনসংখ্যা ছিল ৪.৫ মিলিয়ন যা ২০১০ সালে বেড়ে ৯.৫ মিলিয়ন হয়, কেবলমাত্র আইনজীবিদের মধ্যে গণনায়, গ্রেটার জাকার্তার ১৯৭০ সালের জনসংখ্যা ৮.২ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ২০১০ সালে ২৮.৫ মিলিয়ন হয়েছে। ২০১৪ সালের তথ্য অনুসারে, জাকার্তার জনসংখ্যা ছিল দশ কোটি এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৫,১৪৭ জন।BRT – Case StudyA 5 – Annex 5 Case Studies and Lessons – Module 2: Bus Rapid Transit (BRT): Toolkit for Feasibility Studies . Sti-india-uttoolkit.adb.org. Retrieved 12 June 2011.Puslitbang Ekonomi dan Pembangunan, Perubahan Pemanfaatan Tanah di Jabotabek, Jakarta: Lembaga Ilmu Pengetahuan Indonesia, 1998 ২০১৪ সালে গ্রেটার জাকার্তার জনসংখ্যা ৩০ কোটির মতো ছিল, যা ইন্দোনেশিয়ার সামগ্রিক জনসংখ্যার ১১%। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৫,৬ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে এটি বিশ্বের বৃহত্তম অতিমহানগরী হওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যায়। ২০১০ সালে লিঙ্গ অনুপাত ছিল ১০২.৮ জন (পুরুষ প্রতি ১০০ জন নারী) এবং ২০১৪ সালে এ অনুপাত ছিল ১০১.৩। জাতিগত সম্প্রদায় এবং ধর্ম জাকার্তা বহুভাষা ও ধর্মীয়ভাবে বৈচিত্র্যময় শহর। ২০১০ এর আদমশুমারি অনুসারে নগরীর জনসংখ্যার ৩৬.১৭% জন জাভানিজ, ২৮.২৯% বেতাভি, ১৪.৬১% সুন্দানিজ, ৬.৬২% চীনা, ৩.৪২% বাটক, ২.৮৫% মিনাংবাউ, ০.৯% মালয়েশিয়া, ০.০৮% ইন্দো এবং অন্যান্য জাতীগোষ্ঠি ছিল। ২০১৭ সালে, জাকার্তার ধর্মীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইসলাম (৮৩.৪৩%), প্রোটেস্ট্যান্টিজম (৮.৩৬%), ক্যাথলিক (৮.০%), বৌদ্ধধর্ম (৩.৭৪%), হিন্দু (০.৯৯%), এবং কনফুসিয়ানিজম (০.০১%) ধর্মের লোক বসবাস করে। প্রায় ২৩১ জন লোক ধর্ম অনুসরণ করার দাবি করেছিল। জাকার্তার বেশিরভাগ পেসেন্ট্রেন (ইসলামিক বোর্ডিং স্কুল) সনাতনবাদী নাহদলাতুল উলামার সাথে সম্পৃক্তPemerintah Provinsi Daerah Khusus Ibukota Jakarta, Ensiklopedi Jakarta: Culture & Heritage, Vol. 1, Dinas Kebudayaan dan Permuseuman, 2005, আধুনিকতাবাদী সংগঠনগুলি বেশিরভাগ শিক্ষিত নগর অভিজাত এবং বণিক ব্যবসায়ীদের একটি আর্থ-সামাজিক শ্রেণি সরবরাহ করে। তারা শিক্ষা, সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ধর্মীয় প্রচারকে অগ্রাধিকার দেয়। জাকার্তায় অনেক ইসলামী সংগঠনের সদর দফতর রয়েছে, নাহদলাতুল উলামা, ইন্দোনেশিয়ান ওলামা কাউন্সিল, মুহাম্মদিয়া, জারিংন ইসলাম লিবারাল, এবং ফ্রন্ট পেম্বেলা ইসলাম প্রভৃতি।Donald Porter, Managing Politics and Islam in Indonesia, 2002 জাকার্তার আর্চডিয়োসিসে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের একটি মহানগর রয়েছে, যা ধর্মীয় প্রদেশের অংশ হিসাবে পশ্চিম জাভার অন্তর্ভুক্ত। এখানে একটি বাহাই সম্প্রদায়ও রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা রেলপথ আকাশপথ বৈদ্যুতিক যোগাযোগব্যবস্থা জনপথ পরিবহন ব্যবস্থা জনপথ নৌপথ সমুদ্র পর্যটন বৈশিষ্ট্য পার্ক খেলাধুলা শিক্ষা মূল নিবন্ধ:জাকার্তার শিক্ষা ব্যবস্থা thumb|right|মেডিসিন অনুষদ, ইউনিভার্সিটি অব ইন্দোনেশিয়া জাকার্তা অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রস্থল,তার মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব জাকার্তা জাকার্তায় অবস্থিত সর্ববৃহৎ এবং পুরাতন তৃতীয় পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । এটি একটি গণ প্রতিষ্ঠান যার ক্যাম্পাস রয়েছে সালেম্বা (কেন্দ্রীয় জাকার্তা) এবং দিপকে,যা জাকার্তার দক্ষিণে অবস্থিত। ইউনিভার্সিটি অব ইন্দোনেশিয়া ছাড়াও, জাকার্তায় আরো আলাদা তিনটি গণ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে,এগুলো হলঃ শরিফ হিদায়াতউল্লাহ স্টেট ইসলামিক ইউনিভার্সিটি জাকার্তা, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব জাকার্তা(ইউএনজে) এবং ইউনিভার্সিটি অব পেমবানগুনান ন্যাশনাল "ভেটেরান" জাকার্তা( ইউপিএন "ভেটেরান" জাকার্তা)। জাকার্তায় অবস্থিত কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ট্রিসাকতি ইউনিভার্সিটি, মারকু ভুয়ানা ইউনিভার্সিটি, তারুময়ানাগারা ইউনিভার্সিটি, আমা জায়া ইউনিভার্সিটি, পেলিটা হারাপান ইউনিভার্সিটি, বিনা নুসানতারা ইউনিভার্সিটি, প্যানকেসিলা ইউনিভার্সিটি। স্টোভিয়া(STOVIA, School tot Opleiding van Indische Artsen'') ছিল জাকার্তায় অবস্থিত সর্বপ্রথম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় যা ১৮৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বৃহৎ শহর এবং রাজধানী হওয়ার কারণে, ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের জন্য জাকার্তা বাসস্থানের ব্যবস্থা করে। তাদের মধ্যে অনেকেই হলগুলোতে অথবা বাড়িতে বসবাস করে। মৌলিক শিক্ষার জন্য, বিভিন্ন ধরনের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে যা পাবলিক("জাতীয়"), প্রাইভেট("জাতীয় এবং দোভাষী জাতীয় সংযুক্ত") এবং আন্তর্জাতিক স্কুলগুলোকে একত্রে বেঁধেছে। ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত প্রধান চারটি আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে গান্ধী মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, IPEKA ইন্টারন্যাশনাল খ্রিষ্টীয়ান স্কুল, জাকার্তা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং দ্যা ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল,জাকার্তা(BIS)। অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্কুলগুলোর মধ্যে রয়েছে জাকার্তা ইন্টারন্যাশনাল কোরিয়ান স্কুল, বিনা বাংসা স্কুল, জাকার্তা ইন্টারন্যাশনাল মাল্টিকালাচারাল স্কুল, Australian International School, নিউজিল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, এবং সেকোলাহ পেলিটা হারাপান. আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জাকার্তা অন্যান্য শহর গুলোর সাথে সহযোগী শহর হিসেবে চুক্তিতে সাক্ষর করে,এদের মধ্যে একটি হল কাসাবলনংকা যা মরক্কোর একটি বৃহৎ শহর। ইহা ১৯৯০ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর সহযোগী শহর চুক্তিতে সাক্ষর করে। দুটি শহরের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে, জালান কাসাবলাংকা, যা উত্তর জাকার্তায় বাজার ও ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলোর জন্য বিখ্যাত এবং এর নামকরণ জাকার্তার মরক্কো সহযোগী শহরের নামে করা হয়। বর্তমানে কাসাবলংকায় জাকার্তার নামে কোন সড়ক নেই। যাহোক, অন্যদিকে রাবাতে যা মরক্কোর রাজধানী শহর, ১৯৬০ সালে প্রথম ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের পরিদর্শনের স্মৃতিচিহ্ন ও বন্ধুত্বের চিহ্নও রক্ষার্থে একটি রাজপথ সুকার্ণোর নামে করা হয়েছে। জাকার্তা বৃহত্তম শহর ২১ এশিয়া নেটওয়ার্ক এবং জলবায়ু নেতৃত্ব C40 শহরগুলোরও সদস্য। সংযুক্ত এবং অন্তর্ভুক্ত শহর সমুহ এশিয়া নয়া দিল্লি, ভারত ইসলামাবাদ, পাকিস্তান টোকিও, জাপান বেইজিং, চায়না ম্যানিলা, ফিলিপাইন সিওল, দক্ষিণ কোরিয়া আবু ধাবি, সংযুক্ত আরব আমিরাত জেদ্দা, সৌদি আরব হানই, ভিয়েতনাম ব্যাংকক, থাইল্যান্ড ইয়াদ, ইরানইউরোপ বার্লিন, জার্মানি প্যারিস, ফ্রান্স ইসতানবুল, তুরস্ক মস্কো, রাশিয়া রোতারডাম, নেদারল্যান্ড, একটি সহযোগী শহর হিসেবে কিভ, ইউক্রেনআমেরিকা লস এঞ্জেলস, যুক্তরাষ্ট্র মেক্সিকো সিটি, মেক্সিকো নিউ ইয়র্ক সিটি, ইউনাইটেড স্টেটসআফ্রিকা কাসাভলাংকা, মরক্কো তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:ইন্দোনেশিয়ার শহর বিষয়শ্রেণী:এশিয়ার রাজধানী বিষয়শ্রেণী:রাজধানী জেলা ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:জাকার্তা বিষয়শ্রেণী:ইন্দোনেশিয়ার প্রদেশ
জ্যামাইকা
https://bn.wikipedia.org/wiki/জ্যামাইকা
জ্যামাইকা বা জামাইকা ( ) ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। জ্যামাইকার আয়তন , এটি বৃহৎ অ্যান্টিলিস এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে (কিউবা এবং হিস্পানিয়োলার পরে) তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। জ্যামাইকা কিউবার দক্ষিণে প্রায় এবং হিস্পানিয়োলা থেকে (হাইতি এবং ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের দ্বীপের) পশ্চিমে অবস্থিত; ব্রিটিশ শাসিত কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জের উত্তর-পশ্চিমে প্রায় পর্যন্ত বিস্তৃত। মূলত আদিবাসী তাইনো জনগোষ্ঠীর বাসিন্দাদের দখল থেকে দ্বীপটি ১৪৯৪ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের আগমনের পরে স্পেনের শাসনাধীন হয়েছিল। অনেক আদিবাসীকে হত্যা করা হয়েছিল বা এমন রোগে মারা গিয়েছিল যার প্রতিরোধ ক্ষমতা তাদের ছিল না, তারপরে স্পেনীয়রা তখন প্রচুর সংখ্যক আফ্রিকান দাসকে জ্যামাইকাতে শ্রমিক হিসাবে নিয়ে এসেছিল। ১৬৫৫ সাল পর্যন্ত দ্বীপটি স্পেনের দখলে ছিল, যখন ইংল্যান্ড (পরে গ্রেট ব্রিটেন) এটি জয় করে, এর নাম পরিবর্তন করে জ্যামাইকা রেখেছিল। ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের অধীনে জামাইকা আফ্রিকান দাস এবং পরবর্তীকালে তাদের বংশধরের উপর নির্ভরশীল একটি উপনিবেশিক অর্থনীতিতে শীর্ষস্থানীয় চিনি রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছিল। ব্রিটিশরা ১৮৩৮ সালে সমস্ত ক্রীতদাসকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি দিয়েছিল এবং অনেক স্বাধীনতাকামী ব্যক্তি উপনিবেশের হয়ে কাজ করার পরিবর্তে জীবিকার জন্য খামারের কাজকে বেছে নিয়েছিল। ১৮৪০ দশকের শুরুতে, ব্রিটিশরা চীনা এবং ভারতীয় শর্তাবদ্ধ শ্রম ব্যবস্থা ব্যবহার করে উপনিবেশে কাজ দেওয়া শুরু করেছিল। দ্বীপটি ১৯৬২ সালের ৬ই আগস্ট যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। ২.৯ মিলিয়নের বেশি জনসংখ্যা নিয়েজ্যামাইকা আমেরিকার তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল ইংরেজভাষী দেশ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার পরে) এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে চতুর্থ জনবহুল দেশ। কিংস্টন দেশটির রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। জ্যামাইকানদের বেশিরভাগ হল সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা বংশোদ্ভূত, এছাড়াও ইউরোপীয়, পূর্ব এশীয় (প্রাথমিকভাবে চীনা), ভারতীয়, লেবানীয় এবং মিশ্র-জাতি সংখ্যালঘু উল্লেখযোগ্য। ১৯৬০ দশক থেকে কাজের জন্য উচ্চ অভিবাসনের কারণে, বিশেষ করে কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে জ্যামাইকার বৃহৎ অভিবাসী রয়েছে। দেশটির একটি বৈশ্বিক প্রভাব রয়েছে যা তার ছোট আকারকে অস্বীকার করে; এটি রাস্তাফারি ধর্মের জন্মস্থান ছিল, রেগে সংগীত (এবং ডাব, স্কা এবং ড্যান্সহল সম্পর্কিত ধারাগুলি) এবং এটি খেলাধুলায়, বিশেষত ক্রিকেট, স্প্রিন্ট (দৌড় বিশেষ) এবং মল্লক্রীড়ায় আন্তর্জাতিকভাবে লক্ষণীয়। জ্যামাইকা একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং এর অর্থনীতির পর্যটন নির্ভর; এখানে বছরে গড়ে ৪.৩ মিলিয়ন পর্যটক আসেন। রাজনৈতিকভাবে এটি একটি কমনওয়েলথ রাজ্য, যার রানী হিসাবে দ্বিতীয় এলিজাবেথ আছেন। দেশে তাঁর নিযুক্ত প্রতিনিধি হলেন জ্যামাইকার গভর্নর জেনারেল, এটি ২০০৯ সাল থেকে প্যাট্রিক অ্যালেনের অধীনস্থ একটি অফিসে কার্যক্রম পরিচালিত করছে। অ্যান্ড্রু হলনেস ২০১৬ সালের মার্চ থেকে জামাইকার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জ্যামাইকা একটি সংসদীয় সাংবিধানিক রাজতন্ত্র যাতে জ্যামাইকার দ্বি-সংসদের সংসদে ন্যস্ত আইনী ক্ষমতা রয়েছে, যার মধ্যে একটি নিযুক্ত সিনেট এবং সরাসরি নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদ (হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভস) রয়েছে। ব্যুৎপত্তি তাইনো আদিবাসীরা তাদের ভাষায় এটি জেইমাখা () দ্বীপ নামে পরিচিত ছিল,পুরাতন স্পেনীয় শব্দপ্রকরণে যেমন উপস্থাপিত হয়েছে, এর অর্থ এটি "শ/sh" শব্দ দিয়ে শুরু হয়েছিল। যার অর্থ ছিল "কাঠ ও জলের ভূমি" বা "বসন্তের ভূমি"। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের রেকর্ড অনুসারে দ্বীপের প্রথম দিকের তাইনো নাম ইয়ামায়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সাধারণ কথাবার্তায় জ্যামাইকানরা তাদের স্বদেশ দ্বীপটিকে "রক" হিসাবে উল্লেখ করে। "জামরোক", "জামডাউন" (জামাইকান পাতোইসে "জামদুং") বা সংক্ষেপে "জা" এর মতো নামগুলি অপভ্রংশ থেকে প্রাপ্ত হয়েছে। ইতিহাস প্রাগৈতিহাসিক মানুষ খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০-১০০০ সাল থেকে জ্যামাইকাতে বসতি স্থাপন করেছে। এই মানুষগুলির সম্পর্কে খুব কমই জানা গিয়েছে। অন্য আরেকটি দল, তাদের মৃৎশিল্পের জন্য তারা "রেডওয়্যার জাতি" হিসাবে পরিচিত, ধারণানুসারে তারা ৬০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে এসেছিল, এরপরে প্রায় ৮০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে তাইনোরা আসে, সম্ভবত তারা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এসেছিল। তারা কৃষি ও মৎস্য শিকারের মাধ্যমে তাদের অর্থনীতি গড়ে তুলেছিল এবং তারা সংখ্যায় প্রায় ৬০,০০০ এর মতো ছিল এবং মনে করা হয়, ক্যাসিকস (প্রধানগণ) নেতৃত্বে প্রায় ২০০ গ্রামে দলবদ্ধ হয়েছিল। জামাইকার দক্ষিণ উপকূল সর্বাধিক জনবহুল ছিল, বিশেষত এই অঞ্চলটির আশেপাশে এখন ওল্ড হারবার নামে পরিচিত। যদিও প্রায়শই ইউরোপীয়দের সাথে সংস্পর্শে আসার পরে তারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে মনে করা হয়, কিন্তু বাস্তবে তাইনো তখনও জামাইকাতে বাস করত যখন ১৬৫৫ সালে ইংরেজরা দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। কিছু অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে পালিয়ে গিয়ে আফ্রিকান মেরুন সম্প্রদায়ের সাথে মিশে গিয়েছিল। জ্যামাইকান জাতীয় ঐতিহ্য সংস্থা তাইনোরর কোনও অবশিষ্ট প্রমাণ শনাক্ত এবং নথিভুক্ত করার চেষ্টা করছে। স্পেনীয় শাসন (১৫০৯-১৬৫৫) ক্রিস্টোফার কলম্বাস প্রথম ইউরোপীয় যিনি জ্যামাইকা দেখেছিলেন, ১৪৯৪ সালে আমেরিকায় দ্বিতীয় সমুদ্রযাত্রায় সেখানে অবতরণের পর স্পেনের জন্য দ্বীপটি দাবি করেছিলেন। তিনি সম্ভাব্য অবতরণ করেছিলেন ড্রাই হারবার, যার ডিসকভারি বে নামেও পরিচিত এবং সেন্ট অ্যান'স বে কে কলম্বাস "সেন্ট গ্লোরিয়া" নামকরণ করেছিলেন। তিনি পরে ১৫০৩ সালে ফিরে আসেন; যাইহোক, তাঁর জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং তিনি তাঁর নাবিকদল সহ উদ্ধার হওয়ার অপেক্ষায় এক বছর জ্যামাইকায় থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। সেন্ট অ্যান'স বে থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে সেভিলা দ্বীপে প্রথম স্পেনীয় বসতি স্থাপন করা হয়েছিল, যা ১৫০৯ সালে জুয়ান ডি এসকুইভেল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু ১৫২৪ এর কাছাকাছি এটি অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হওয়ায় পরিত্যাগ করা হয়েছিল। রাজধানী স্প্যানিশ টাউনে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, তারপরে সেন্ট জাগো দে লা ভেগা নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিল, যা প্রায় ১৫৩৪ সাল নাগাদ (বর্তমানে সেন্ট ক্যাথরিনে)। অন্যদিকে, তাইনোরা প্রচুর সংখ্যায় মারা যেতে শুরু করেছিল, উভয়দিক থেকে তারা এমন রোগে আক্রান্ত হয়েছিল যার প্রতিরোধ ক্ষমতা তাদের ছিল না এবং এটি স্পেনীয় দাসদের থেকে এসেছিল বলে ধারণা করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্পেনীয়রা আফ্রিকা থেকে দ্বীপে দাস আমদানি শুরু করে। অনেক ক্রীতদাস জ্যামাইকার অভ্যন্তরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় এবং সহজেই তাদের সুরক্ষিত এলাকায় স্বায়ত্তশাসিত সম্প্রদায় গঠন করে, যা অবশিষ্ট তাইনোর সাথে মিশে যায়; এই সম্প্রদায়গুলি মেরুন নামে পরিচিত হয়ে ওঠেছিল। অনেক ইহুদি দ্বীপটিতে বসবাসের জন্য স্পেনীয় অনুসন্ধান থেকে পালিয়ে যায়। তারা ধর্মান্তরিত হয়ে জীবনযাপন করতো এবং প্রায়শই স্পেনীয় শাসকরা তাদের উপর নির্যাতন চালাত, কেউ কেউ স্পেনীয় সাম্রাজ্যের চালানের বিরুদ্ধে গিয়ে জলদস্যুতে পরিণত হয়েছিল। সপ্তাদশ শতকের গোড়ার দিকে অনুমান করা হয় যে জ্যামাইকায় ২,৫০০-৩,০০০ জনের বেশি মানুষ বাস করতো না। প্রাথমিক ব্রিটিশ আমল থাম্ব|হেনরি মর্গান একজন বিখ্যাত ক্যারিবীয় জলদস্যু, বেসরকারী জাহাজের মালিক, উপনিবেশের স্বত্বাধিকারী এবং দাস মালিক ছিলেন; তিনি প্রথম ইংরেজ উপনিবেশবাদীদের মতো ওয়েস্ট ইন্ডিজে চুক্তিভিত্তিক চাকর হিসেবে এসেছিলেন।"Henry Morgan: The Pirate Who Invaded Panama in 1671" , Historynet.com. ইংরেজরা এই দ্বীপে আগ্রহ নিতে শুরু করেছিল এবং হিস্পানিয়োলায় সান্তো ডোমিংগো জয় করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর স্যার উইলিয়াম পেন এবং জেনারেল রবার্ট ভেনাবেলস ১৬৫৫ সালে জ্যামাইকা আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৬৫৭ সালে ওচো রিওসে এবং ১৬৫৮ সালে রিও নুয়েভোতে যুদ্ধের ফলে স্পেনীয়রা পরাজিত হয়েছিল; ১৬৬০ সালে জুয়ান ডি বোলাসের নেতৃত্বে মেরুন সম্প্রদায় স্পেনীয়দের কাছ থেকে সরে এসেছিল এবং ইংরেজদের সমর্থন শুরু করেছিল। তাদের সহায়তায় স্পেনীয়দের পরাজয় নিশ্চিত হয়েছিল। যখন ইংরেজরা জ্যামাইকা দখল করে নিয়েছিল, স্পেনীয় ইহুদিদের ও যারা দ্বীপে থাকতে পছন্দ করতো তাদের বাদ দিয়ে বেশিরভাগ স্পেনীয় উপনিবেশীরা পালিয়ে গিয়েছিল। জ্যামাইকা ছাড়ার আগে স্পেনীয় দাসমালিকেরা তাদের ক্রীতদাসদের মুক্ত করে দিয়েছিল। অনেক দাস ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত মেরুন সম্প্রদায়ের সাথে যোগ দিয়ে পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। শতাব্দীর দাসত্বের সময়, জ্যামাইকান মেরুনরা জ্যামাইকার পার্বত্য অঞ্চলের অভ্যন্তরে মুক্ত সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেছিল, যেখানে তারা জুয়ান ডি সেরাসের মতো মেরুন নেতাদের নেতৃত্বে প্রজন্ম ধরে তাদের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্যতা বজায় রেখেছিল। এদিকে, স্পেনীয়রা দ্বীপটি পুনরায় দখল করার জন্য বেশ কিছু প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, কিন্তু ব্রিটিশরা স্পেনীয় জাহাজে ক্যারিবীয় জলদস্যুদের আক্রমণকে সমর্থন করেছিল; ফলশ্রুতিতে জলদস্যুতা জ্যামাইকাতে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল, পোর্ট রয়্যাল শহর তার অনাচারের জন্য কুখ্যাত হয়ে ওঠেছিল। স্পেন পরে মাদ্রিদ চুক্তির (১৬৭০) মাধ্যমে দ্বীপটির ইংরেজ দখলকে স্বীকৃতি দেয়। ফলস্বরূপ, ইংরেজ কর্তৃপক্ষ জলদস্যুদের জঘন্যতম বাড়াবাড়ির লাগাম টানতে চেয়েছিল। ১৬৬০ সালে, জ্যামাইকার জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৪,৫০০ জন শ্বেতাঙ্গ এবং ১,৫০০ কৃষ্ণাঙ্গ ছিল। ১৬৭০ দশকের শুরুর দিকে, ইংরেজরা যেমন আখের আবাদ গড়ে তুলেছিল, তেমনি বিপুল সংখ্যক ক্রীতদাস দ্বারা কাজ করানো হত, যার ফলে আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ জনসংখ্যার একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। জ্যামাইকার আইরিশরাও দ্বীপের প্রাথমিক জনসংখ্যার একটি বড় অংশ গঠন করেছিল, যা ১৭ শতকের শেষের দিকে দ্বীপে শ্বেতাঙ্গ জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ ছিল, যা ইংরেজ জনসংখ্যার দ্বিগুণ ছিল। ১৬৫৫ সালের বিজয়ের পর তাদেরকে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক এবং সৈনিক হিসেবে আনা হয়েছিল। তিন রাজ্যের চলমান যুদ্ধের ফলে আইরিশদের অধিকাংশই আয়ারল্যান্ড থেকে রাজনৈতিক যুদ্ধবন্দী হিসেবে জোর করে বহন করা হয়েছিল। দ্বীপে বিপুল সংখ্যক আইরিশের অভিবাসন ১৮ শতক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ১৬৬৪ সালে জ্যামাইকার বিধানসভা তৈরির সঙ্গে স্থানীয় সরকারের একটি সীমিত রূপ চালু করা হয়েছিল; যাইহোক, এটি শুধুমাত্র অল্প সংখ্যক ধনী উপনিবেশ মালিকদের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। ১৬৯২ সালে, সম্পূর্ণ দ্বীপটি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল যার ফলে কয়েক হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল এবং পোর্ট রয়্যাল প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছিল। অষ্টাদশ -ঊনবিংশ শতাব্দী থাম্ব|১৮৩১-৩২ সালে ব্যাপটিস্ট যুদ্ধের সময় একটি উপনিবেশে আগুন লাগানোর দৃশ্য ১৭০০ দশকে অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছিল, মূলত চিনি এবং অন্যান্য ফসলের উপর ভিত্তি করে যেমন কফি, তুলা এবং নীল। এই সমস্ত ফসল উৎপাদনে কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাসরা কাজ করত, যারা ছোট উপনিবেশ মালিকদের সম্পত্তি হিসাবে ছিল এবং স্বল্প আয়ু এবং প্রায়ই নিষ্ঠুর জীবনযাপন করতো। ১৮ শতকে, ক্রীতদাসরা পালিয়ে যায় এবং ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় মেরুনদের সাথে যোগ দেয় এবং ফলস্বরূপ প্রথম মেরুন যুদ্ধ (১৭২৮ - ১৭৩৯/৪০) ঘটেছিল, যা অচলাবস্থার মধ্যে শেষ হয়েছিল। ব্রিটিশ সরকার শান্তির জন্য আবেদন করে, এবং ১৭৩৯ সালে কাজোউ এবং অ্যাকম্পং এর নেতৃত্বে লিওয়ার্ড মেরুনদের সাথে এবং ১৭৪০ সালে কোয়াও এবং রানী ন্যানির নেতৃত্বে উইন্ডওয়ার্ড মারুনের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে। একটি বড় দাস বিদ্রোহ, যা ট্যাকির বিদ্রোহ নামে পরিচিত, ১৯৭০ সালে শুরু হয়েছিল কিন্তু ব্রিটিশ এবং তাদের মেরুন মিত্রদের কাছে পরাজিত হয়েছিল। ১৭৯৫-৯৬ সালে দ্বিতীয় সংঘর্ষের পর, কাজোউ শহরের (ট্রেলুনি টাউন) মেরুন শহর থেকে অনেক মেরুনকে নোভা স্কোশিয়া এবং পরে সিয়েরা লিওনে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অনেক ক্রীতদাস পালিয়ে গিয়েছিল এবং থ্রি-ফিঙ্গার্ড জ্যাক, কাফি এর মতো এবং মি-নো-সেন-ইউ-নো-কামে পালিয়ে যাওয়া দাসদের নেতৃত্বে স্বাধীন সম্প্রদায় গঠন করেছিল। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে, জ্যামাইকার ক্রীতদাস শ্রম এবং উপনিবেশ অর্থনীতির উপর নির্ভরশীলতার ফলে কৃষ্ণাঙ্গরা প্রায় ২০:১ এর অনুপাতে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে সংখ্যায় বেশি হয়ে গিয়েছিল। দাসত্ব বিলোপের পরিকল্পনা করার সময়, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট দাসদের অবস্থার উন্নতির জন্য আইন পাস করেছিল। সেই আইন অনুযায়ী মালিকদের মাঠে চাবুক ব্যবহার এবং মহিলাদের বেত্রাঘাত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল; উপনিবেশ মালিকদের অবহিত করা হয়েছিল যে দাসদের ধর্মীয় শিক্ষার অনুমতি দেওয়া হবে এবং প্রতি সপ্তাহে একটি বিনামূল্যে দিন দিতে হবে যেইদিন ক্রীতদাসরা তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারবে।জ্যামাইকার বিধানসভা নতুন আইনগুলি নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছিল এবং এই আইন প্রতিরোধও করেছিল। সদস্যরা তখন সদস্যপদ নিয়ে ইউরোপীয়-জ্যামাইকানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, তারা দাবি করেছিল যে ক্রীতদাসরা সন্তুষ্টি এবং দ্বীপের বিষয়ে সংসদের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ করেছিল। শর্তগুলি হালকা করা হলে ক্রীতদাস মালিকরা সম্ভাব্য বিদ্রোহের আশঙ্কা করেছিল। থাম্ব|হারবার স্ট্রিট, কিংস্টন, সন ১৮২০ ব্রিটিশরা ১৮০৭ সালে দাস ব্যবসা বাতিল করে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির নিজের জন্য এই আইন প্রযোজ্য ছিল না। ১৮৩১ সালে ব্যাপটিস্ট প্রচারক স্যামুয়েল শার্পের নেতৃত্বে একটি বিশাল ক্রীতদাস বিদ্রোহ শুরু হয়, যা ব্যাপটিস্ট যুদ্ধ নামে পরিচিত। বিদ্রোহের ফলে শত শত মানুষ মারা যায়, অনেক উপনিবেশ ধ্বংস হয় এবং উপনিবেশ শ্রেণী কর্তৃক ভয়াবহ প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছিল। এর মতো বিদ্রোহের ফলে এবং বিলোপবাদীদের প্রচেষ্টার ফলে, ব্রিটিশরা ১৮৩৪ সালে তাদের সাম্রাজ্যে দাসত্বকে নিষিদ্ধ করেছিল, ১৮৩৮ সালে ঘোষিত ভূমিদাসত্ব থেকে সম্পূর্ণ মুক্তির দেওয়া হয়েছিল। ১৮৩৪ সালে জনসংখ্যা ছিল ৩,৭১,০৭০ যার মধ্যে ১৫,০০০ ছিল শ্বেতাঙ্গ, ৫,০০০ ছিল মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ; ৪০,০০০ মিশ্রবর্ণ; এবং ৩,১১,০৭০ জন দাস ছিল। ফলে শ্রমিকের অভাবে ব্রিটিশদের শ্রম চাহিদা পরিপূরক করার জন্য চুক্তিভিত্তিক চাকরদের আমদানি শুরু করতে প্ররোচিত করেছিল, কারণ অনেক মুক্তিকামী ব্যক্তিরা উপনিবেশের হয়ে কাজ করার বিরোধিতা করেছিল। ভারত থেকে নিয়োগকৃত শ্রমিকরা ১৮৪৫ সালে এবং ১৮৫৪ সালে চীনা শ্রমিকরা আসতে শুরু করেছিল। অনেক দক্ষিণ এশীয় এবং চীনা বংশধর আজও জ্যামাইকায় বসবাস করছে। ১৮৭১ সালে আদমশুমারিতে ৫,০৬,১৫৪ জন জনসংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছিল, যার মধ্যে ২,৪৬,৫৭৩ জন পুরুষ এবং ২,৫৯,৫৮১ জন মহিলা ছিল। তাদের জাতির মধ্যে ১৩,১০১ জন শ্বেতাঙ্গ, ১,০০,৩৪৬ জন মিশ্রবর্ণ (মিশ্রিত কালো এবং সাদা) এবং ৩,৯২,৭০৭ জন কৃষ্ণাঙ্গ হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছিল। এই সময়টি অর্থনৈতিক মন্দা দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল, অনেক জ্যামাইকান দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছিল। এই নিয়ে অসন্তুষ্টি, এবং ক্রমাগত কৃষ্ণাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগত বৈষম্য এবং প্রান্তিকীকরণ, যা পল বোগলের নেতৃত্বে ১৮৬৫ সালে মরান্ট বে বিদ্রোহের প্রাদুর্ভাব ঘটায়, যা গভর্নর জন জন আইয়ারের এমন নিষ্ঠুরতার দেখিয়েছিলেন যে তাকে তার অবস্থান থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তার উত্তরসূরি জন পিটার গ্রান্ট, দ্বীপে ব্রিটিশ শাসন বজায় রাখার লক্ষ্যে সামাজিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের একটি ধারাবাহিক আইন প্রণয়ন করেছিলেন, যা ১৮৬৬ সালে একটি রাজ উপনিবেশে পরিণত হয়। ১৮৭২ সালে রাজধানী স্প্যানিশ টাউন থেকে কিংস্টনে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। বিংশ শতকের প্রথম দিকে বাম|থাম্ব|298x298px|মার্কাস গারভে, আফ্রিকা ফেরত আন্দোলনের জনক এবং জ্যামাইকার প্রথম জাতীয় নায়ক ১৯০৭ সালে জ্যামাইকাতে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। যার ফলে এটি এবং পরবর্তীতে শহরজুড়ে আগুন লাগার ফলে কিংস্টনে ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং প্রায় ৮০০-১০০০ মানুষের মারা গিয়েছিল হয়েছিল। বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য অনেক জ্যামাইকানদের জন্য একটি সমস্যা ছিল। রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন আন্দোলন গড়ে ওঠেছিল, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে সার্বজনীন নিগ্রো উন্নয়ন সংঘ ও আফ্রিকান কমিউনিটিস লীগ ১৯১৭ সালে মার্কাস গারভে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। বৃহত্তর রাজনৈতিক অধিকার এবং শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি কামনা করার পাশাপাশি গারভে একজন বিশিষ্ট প্যান-আফ্রিকানবাদী এবং আফ্রিকা ফিরে যাওয়া আন্দোলনের প্রবক্তা ছিলেন। তিনি রাস্তাফারির পিছনে অন্যতম প্রধান অনুপ্রেরণা ছিলেন, যা ১৯৩০ দশকে জ্যামাইকায় প্রতিষ্ঠিত একটি ধর্ম যা ইথিওপিয়ার সম্রাট হাইল স্যালেসির চিত্রের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে একটি আফ্রোকেন্দ্রিক ধর্মতত্ত্বের সাথে খ্রিস্টধর্মকে সংযুক্ত করেছিল। মাঝে মাঝে নিপীড়ন সত্ত্বেও, রাস্তাফারি দ্বীপে একটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস হয়ে ওঠে, পরে বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৩০ দশকের মহামন্দা জ্যামাইকাকে আঘাত করেছিল। ১৯৩৪–৩৯ সালে ব্রিটিশ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান শ্রমিক অস্থিরতার অংশ হিসাবে, জ্যামাইকাতে অসংখ্য ধর্মঘট দেখা দিয়েছিল, যার পরিণতি ১৯৩৮ সালে একটি ধর্মঘট একটি পূর্ণাঙ্গ দাঙ্গায় পরিণত হয়েছিল। ফলস্বরূপ, ব্রিটিশ সরকার ঝামেলার কারণগুলি খতিয়ে দেখতে একটি কমিশন গঠন করে; তাদের প্রতিবেদনে ব্রিটেনের ক্যারিবীয় উপনিবেশগুলিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছিল। ১৯৪৪ সালে একটি নতুন প্রতিনিধি পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার দ্বারা নির্বাচিত হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে জ্যামাইকার দ্বি-দলীয় ব্যবস্থার উদ্ভব হয়েছিল, আলেকজান্ডার বুস্তামন্তের অধীনে জ্যামাইকান লেবার পার্টি (জেএলপি) এবং নরম্যান ম্যানলির অধীনে পিপলস ন্যাশনাল পার্টি (পিএনপি) গঠিত হয়েছিল। জ্যামাইকা ধীরে ধীরে যুক্তরাজ্য থেকে ক্রমবর্ধমান স্বায়ত্তশাসন লাভ করে। ১৯৫৮ সালে এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফেডারেশনের একটি প্রদেশে পরিণত হয়েছিল, যা ব্রিটেনের ক্যারিবীয় উপনিবেশগুলির একটি ফেডারেশন। ফেডারেশনের সদস্যপদ বিভক্তিকর প্রমাণিত হয়েছিল এবং এই বিষয়ে একটি গণভোটে সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ছাড়তে দেখা গেছে। ফেডারেশন ত্যাগ করার পর, জ্যামাইকা ১৯৬২ সালের ৬ই আগস্ট পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। তবে নতুন রাজ্য হিসেবে অবশ্য কমনওয়েলথ অব নেশনসে তার সদস্যপদ বজায় রেখেছে (রানী রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে) এবং ওয়েস্টমিনস্টার-ধাঁচের সংসদীয় পদ্ধতি গ্রহণ করে। বুস্তামন্তে, ৭৮ বছর বয়সে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী যুগ শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, যা বার্ষিক গড় প্রায় ৬% ছিল, রক্ষণশীল জেএলপি সরকারের অধীনে স্বাধীনতার প্রথম দশ বছর লক্ষণীয় ছিল; জেএলপির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পরপর প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার বুস্তামান্তে, ডোনাল্ড স্যাংস্টার (যিনি ক্ষমতা গ্রহণের দুই মাসের মধ্যে প্রাকৃতিক কারণে মারা গেছেন) এবং হিউ শিয়ারার। বক্সাইট/অ্যালুমিনা, পর্যটন, উৎপাদন শিল্প এবং কিছুটা হলেও কৃষি খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের উচ্চ স্তরের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৯৬৭ জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে, জেএলপি আবার বিজয়ী হয়, ৫৩টি আসনের মধ্যে ৩৩টিতে জয়লাভ করেছিল, পিএনপি ২০টি আসন পেয়েছিল। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে জ্যামাইকা জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সদস্য হয়ে ওঠে এবং ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে এবং কিউবার মতো কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের সাথেও যোগাযোগ গড়ে তোলে। থাম্ব|মাইকেল ম্যানলি, ১৯৭২-১৯৮০ এবং ১৯৮৯-১৯৯২ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী ছিলেন প্রথম দশকের আশাবাদের সঙ্গে অনেক আফ্রো-জ্যামাইকানদের মধ্যে অসমতার ক্রমবর্ধমান অনুভূতি এবং উদ্বেগ ছিল যে বৃদ্ধির সুফল শহুরে দরিদ্ররা ভাগ করে নিতে পারছিল না, যাদের মধ্যে অনেকেই অপরাধপ্রবণ কিংস্টনের বস্তি-এলাকা বসবাস করছিল। এর মধ্যে নির্বাচনে পিএনপি ৩৭টি আসন এবং জেএলপি ১৬টি আসন জিতেছিল। ম্যানলির সরকার বিভিন্ন সামাজিক সংস্কার, যেমন একটি উচ্চতম ন্যূনতম মজুরি, ভূমি সংস্কার, মহিলাদের সমতার জন্য আইন, বৃহত্তর আবাসন নির্মাণ এবং শিক্ষাগত বিধান বৃদ্ধি ইত্যাদি প্রণয়ন করেছিল। আন্তর্জাতিকভাবে তিনি কমিউনিস্ট গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্ক উন্নত করেছিলেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনের কঠোর বিরোধিতা করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে, পিএনপি ৪৭টি এবং জেএলপি ১৩টি আসনে জয়লাভ করেছিল। যাতে পিএনপি শতকরা ৮৫ ভাগ ভোট পেয়েছিল। যাইহোক, অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত কারণগুলি যেমন তেলের ধাক্কা ইত্যাদি সংমিশ্রণের কারণে তৎকালীন সময়ের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছিল। জেএলপি এবং পিএনপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হয়ে ওঠেছিল এবং এই সময়ে রাজনৈতিক এবং সন্ত্রাসী দল-সম্পর্কিত সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। পরিবর্তনের জন্য, জামাইকানরা ১৯৮০ সালে এডওয়ার্ড সিগার অধীনে জেএলপিকে ভোট দিয়েছিল এবং পিএনপি মাত্র নয়টি আসন ও জেএলপি ৫১টি আসন পেয়ে জয়ী হয়েছিল। দৃঢ়ভাবে কমিউনিস্ট বিরোধী, সিগা কিউবার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল এবং ১৯৮৩ সালে গ্রেনাডায় মার্কিন আক্রমণকে সমর্থন করার জন্য সৈন্য পাঠিয়েছিল। অর্থনৈতিক অবনতি অবশ্য ১৯৮০ দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল, যা বেশ কয়েকটি কারণের কারণে বেড়ে গিয়েছিল। ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক ও স্থানীয় ঋণের কারণে, বড় আর্থিক ঘাটতি সহ সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অর্থায়ন চেয়েছিল, যা বিভিন্ন কঠোরতা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের উপর নির্ভরশীল ছিল। এর ফলে ১৯৮৫ সালে ধর্মঘট হয়েছিল এবং সিগা সরকারের প্রতি সমর্থন কমে গিয়েছিল, যা ১৯৮৮ সালের হারিকেন গিলবার্ট দ্বারা সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের প্রতি সরকারের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনার কারণে তা আরো বেড়ে গিয়েছিল। পরে সমাজতন্ত্রের উপর জোর দিয়ে এবং আরো কেন্দ্রীয় অবস্থান গ্রহণ করে, মাইকেল ম্যানলি এবং পিএনপি ১৯৮৯ সালে ৪৫টি আসন পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। উক্ত নির্বাচনে জেএলপি ১৫টি আসন পেয়েছিল পিএনপি প্রধানমন্ত্রী মাইকেল ম্যানলি (১৯৮৯-১৯৯২), পি. জে. প্যাটারসন (১৯৯২-২০০৫) এবং পোর্টিয়া সিম্পসন-মিলার (২০০৫-২০০৭) এর অধীনে একাধিক নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন। ১৯৯৩ সালের জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে, প্যাটারসন পিএনপিকে বিজয়ের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন, যেখানে জেএলপি আটটি আসন এবং পিএনপি ৫২টি আসন পেয়ে জয়লাভ করেছিল। প্যাটারসন ১৯৯৭ সালের জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে জেএলপির ১০ টি আসন বনাম পিএনপির ৫০টি আসনের আরেকটি বিশাল ব্যবধানে জিতেছিলেন। ২০০২ সালের জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে প্যাটারসনের টানা তৃতীয় বিজয় এসেছিল এবং পিএনপি ক্ষমতা ধরে রেখেছিল, কিন্তু আসন সংখ্যাগরিষ্ঠতা কমে ৩৪ টি আসন থেকে ২৬টি আসনে নেমে এসেছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ সালে প্যাটারসন পদত্যাগ করেছিলেন এবং তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন পোর্টিয়া সিম্পসন-মিলার, যিনি জ্যামাইকার প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। এই সময়ের মধ্যে ভোটের হার ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছিল, যা ১৯৯৩ সালে ৬৭.৪% থেকে ২০০২ সালে ৫৯.১% গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্কার চালু করা হয়েছিল যেমন অর্থ খাতকে নিয়ন্ত্রণহীন করেছিল এবং নির্দলীয় জ্যামাইকান ডলার প্রবর্তনের পাশাপাশি অবকাঠামোতে অধিক বিনিয়োগ, যখন একটি শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা জাল বজায় রেখেছিল। রাজনৈতিক সহিংসতা, যা আগের দুই দশকে অনেক বেশি ছিল, উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছিল। ২০০৭ সালে পিএনপি জেএলপির কাছে ৩২টি আসনের বিপরীতে ২৮টি আসন পেয়ে অল্প ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল, যার ভোটদান ৬১.৪৬ শতাংশে পৌঁছেছিল। উক্ত নির্বাচনের ফলে পিএনপির ১৮ বছর শাসনের ইতি ঘটেছিল এবং ব্রুস গোল্ডিং নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। গোল্ডিংয়ের মেয়াদ (২০০৭–২০১০) বিশ্ব মন্দার প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল, পাশাপাশি জ্যামাইকান পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী ২০১০ সালে মাদক সম্রাট ক্রিস্টোফার কোককে গ্রেফতারের প্রচেষ্টার ফলে সারা দেশজুড়ে সহিংসতায় ছড়িয়ে পড়েছিল, যার ফলে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। এই ঘটনার ফলে গোল্ডিং পদত্যাগ করেছিলেন এবং ২০১১ সালে অ্যান্ড্রু হলনেস তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। যদিও জ্যামাইকায় ব্যাপকভাবে উদযাপিত স্বাধীনতা একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। ২০১১ সালের একটি জরিপ দেখিয়েছিল যে প্রায় ৬০% জ্যামাইকান বিশ্বাস করে যে ব্রিটিশ উপনিবেশ থাকলে দেশটি আরও ভাল হতো, মাত্র ১৭% বিশ্বাস করে যে এটি আরও খারাপ হতে পারে কারণ বছরের পর বছর সামাজিক ও আর্থিক অব্যবস্থাপনার সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। যাইহোক, এই জরিপ জেএলপির অপরাধ ও অর্থনীতি পরিচালনার প্রতি আরও বেশি অসন্তোষ প্রতিফলিত করেছিল এবং ফলস্বরূপ, হলনেস ও জেএলপি ২০১১ জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিল, যা পোর্টিয়া সিম্পসন-মিলার ও পিএনপিকে ক্ষমতায় ফিরে নিয়ে এসেছিল। আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৬৩ করা হয়েছিল এবং পিএনপি ৪২টি আসন ও জেএলপি ২১ টি আসন পেয়ে পিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল। ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫৩.১৭%। হলনেসের জেএলপি ২৫ ফেব্রুয়ারি সিম্পসন-মিলারের পিএনপিকে পরাজিত করেছিল এবং ২০১৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। পিএনপি ৩১টি আসন এবং জেএলপি ৩২টি আসন পেয়ে নির্বাচন জিতেছিল। ফলস্বরূপ, সিম্পসন-মিলার দ্বিতীয়বারের মতো বিরোধী দলীয় নেতা হয়েছিলেন। প্রথমবারের মতো ভোটারদের উপস্থিতি ৫০% নিচে নেমেছিল, যা মাত্র ৪৮.৩৭% ছিল। ২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনে, অ্যান্ড্রু হলনেস জ্যামাইকার লেবার পার্টির জন্য টানা দ্বিতীয় জয়লাভ করে জেএলপির জন্য ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন, যেখানে জেএলপি ৪৯টি আসন এবং পিটার ফিলিপস নেতৃত্বাধীন পিএনপি ১৪টি আসন জিতেছিল। জেএলপির জন্য সর্বশেষ পর পর জয় ১৯৮০ সালে হয়েছিল। যাইহোক, এই নির্বাচনে ভোটার মাত্র ৩৭% ছিল, যা সম্ভবত করোনাভাইরাস মহামারী দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। সরকার এবং রাজনীতি থাম্ব|222x222px|রানী দ্বিতীয় এলিজাবেথ, জ্যামাইকার রানী জ্যামাইকা একটি সংসদীয় গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। জ্যামাইকার রাষ্ট্রপ্রধান হলেন জ্যামাইকার রানী (বর্তমানে দ্বিতীয় এলিজাবেথ); তিনি জ্যামাইকার গভর্নর জেনারেল স্থানীয়ভাবে প্রতিনিধিত্ব করেন। গভর্নর-জেনারেল জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী এবং সমগ্র মন্ত্রিসভা দ্বারা মনোনীত হন এবং তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে রানী দ্বারা নিযুক্ত হন। মন্ত্রিসভার সকল সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে গভর্নর-জেনারেল কর্তৃক নিযুক্ত হয়। রানী এবং গভর্নর-জেনারেল কিছু সাংবিধানিক সংকট পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য তাদের সংরক্ষিত ক্ষমতা ছাড়াও বেশিরভাগ আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করে। রানীর অবস্থান অনেক বছর ধরে জ্যামাইকায় অব্যাহত থাকা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল এবং বর্তমানে উভয় প্রধান রাজনৈতিক দল একটি রাষ্ট্রপতির সাথে একটি প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জ্যামাইকার বর্তমান সংবিধান ১৯৬২ সালে জ্যামাইকার আইনসভার দ্বিপক্ষীয় যৌথ কমিটি দ্বারা খসড়া করা হয়েছিল। এটি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের জ্যামাইকা স্বাধীনতা আইন, ১৯৬২ দিয়ে কার্যকর করা হয়েছিল, যা জ্যামাইকাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিতি দিয়েছিল। জ্যামাইকার পার্লামেন্ট দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট, যা প্রতিনিধি পরিষদ বা হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ (নিম্নকক্ষ) এবং সেনেট (উচ্চকক্ষ) নিয়ে গঠিত। প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা (সংসদ সদস্য বা এমপি হিসেবে পরিচিত) সরাসরি নির্বাচিত হন এবং প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য, যারা গভর্নর-জেনারেলের সর্বোত্তম রায়ে, সেই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থা অর্জনে সবচেয়ে ভালো প্রতিনিধি, গভর্নর-জেনারেল দ্বারা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য নিযুক্ত করা হয়। সিনেটরদের প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় সংসদ নেতা যৌথভাবে মনোনীত করেন এবং তারপর গভর্নর-জেনারেল দ্বারা নিযুক্ত হন। জ্যামাইকার বিচার বিভাগ ইংরেজ আইন এবং কমনওয়েলথ অফ নেশনসের নজির থেকে উদ্ভূত একটি সাধারণ আইন ব্যবস্থায় কাজ করে। রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন থাম্ব|জ্যামাইকান পার্লামেন্টের ভিতরে|165x165পিক্সেল জ্যামাইকায় ঐতিহ্যগতভাবে একটি দ্বি-দলীয় ব্যবস্থা আছে, যার ক্ষমতা প্রায়ই পিপলস ন্যাশনাল পার্টি (পিএনপি) এবং জ্যামাইকা লেবার পার্টির (জেএলপি) মধ্যে পরিবর্তিত হয়। ২০২০ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর বর্তমান প্রশাসনিক এবং আইনী ক্ষমতার অধিকারী দলটি হল জ্যামাইকা লেবার পার্টি। এছাড়াও বেশ কিছু ছোট দল আছে যারা এখনো সংসদে আসন লাভ করতে পারেনি; এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দল হল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম)। সামরিক থাম্ব|252x252পিক্সেল|২০০২ সালে এল১এ১ সেলফ-লোডিং রাইফেল চালানোর প্রশিক্ষণ নেওয়ার সময় জ্যামাইকান সৈন্যরা জ্যামাইকা ডিফেন্স ফোর্স (জেডিএফ) হল ছোট কিন্তু পেশাদার সামরিক বাহিনী। জেডিএফ ব্রিটিশ সামরিক মডেলের উপর ভিত্তি করে একই ধরনের সংগঠন, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র এবং ঐতিহ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল। জেডিএফ সরাসরি ব্রিটিশ উপনিবেশ যুগে গঠিত ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়া রেজিমেন্ট থেকে এসেছে। জ্যামাইকা ডিফেন্স ফোর্স (জেডিএফ) একটি পদাতিক রেজিমেন্ট এবং রিজার্ভ কর্পস, একটি এয়ার উইং, একটি কোস্টগার্ড বহর এবং একটি সহায়ক ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট নিয়ে গঠিত। পদাতিক রেজিমেন্টে ১ম, ২য় ও ৩য় (ন্যাশনাল রিজার্ভ) ব্যাটালিয়ন রয়েছে। জেডিএফ এয়ার উইং তিনটি ফ্লাইট ইউনিট, একটি ট্রেনিং ইউনিট, একটি সাপোর্ট ইউনিট এবং জেডিএফ এয়ার উইং (ন্যাশনাল রিজার্ভ) -এ বিভক্ত আছে। কোস্টগার্ড সমুদ্রগামী ক্রু এবং সাপোর্ট ক্রুদের মধ্যে বিভক্ত যারা সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং সামুদ্রিক আইন প্রয়োগের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা করে। অন্যদিকে সাপোর্ট ব্যাটালিয়নের ভূমিকা হল যুদ্ধে সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সহায়তা প্রদান করা এবং বাহিনীর প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য যোগ্যতা প্রশিক্ষণ প্রদান করা। সামরিক ইঞ্জিনিয়ারদের বর্ধিত চাহিদার কারণে ১ম ইঞ্জিনিয়ার রেজিমেন্ট গঠিত হয়েছিল এবং তাদের ভূমিকা যখন এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং সেবা প্রদান করা। জেডিএফের সদর দপ্তরে জেডিএফ কমান্ডার, কমান্ড স্টাফের পাশাপাশি গোয়েন্দা, জজ অ্যাডভোকেট অফিস, প্রশাসনিক ও ক্রয় বিভাগ রয়েছে। ২০১৭ সালে, জ্যামাইকা জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। প্রশাসনিক বিভাগ জ্যামাইকা ১৪টি প্যারিশে বিভক্ত, যা তিনটি ঐতিহাসিক বিভাগতে বিভক্ত যেগুলির কোন প্রশাসনিক প্রাসঙ্গিকতা নেই। স্থানীয় সরকারের পরিপ্রেক্ষিতে প্যারিশগুলিকে "স্থানীয় কর্তৃপক্ষ" হিসাবে মনোনীত করা হয়। এই স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলিকে আবার "পৌরনিগম" বলা হয়ে থাকে, যা হয় নগর পৌরসভা বা শহর পৌরসভা। আইনসম্মতভাবে যে কোন নতুন নগর পৌরসভার কমপক্ষে ৫০,০০০ জনসংখ্যা থাকতে হবে এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দ্বারা নির্ধারিত একটি শহর পৌরসভা থাকতে হবে। কিন্তু জ্যামাইকাতে বর্তমানে কোন শহর পৌরসভা নেই। কিংস্টন এবং সেন্ট অ্যান্ড্রুজের প্যারিশের স্থানীয় সরকারগণ কিংস্টন এবং সেন্ট অ্যান্ড্রু পৌরনিগমকে নগর পৌরসভা হিসাবে একত্রিত করেছিল। ২০০৩ সালে গঠন করা পোর্টমোর পৌরসভা হল জ্যামাইকার নতুন নগর পৌরসভা। যদিও এটি ভৌগোলিকভাবে সেন্ট ক্যাথরিনের প্যারিশের মধ্যে অবস্থিত, তবে এটি স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়। কর্নওয়াল বিভাগরাজধানীকিমি২মিডলসেক্স বিভাগরাজধানীকিমি২সারেয় বিভাগরাজধানীকিমি২ ১ হ্যানোভারলুসিয়া  ৪৫০ ৬ ক্লারেন্ডনমে পেন১,১৯৬ ১১ কিংস্টনকিংস্টন২৫ ২ সেন্ট এলিজাবেথব্ল্যাক রিভার১,২১২ ৭ ম্যানচেস্টারম্যান্ডেভিল   ৮৩০ ১২ পোর্টল্যান্ডপোর্ট আন্তোনিও৮১৪ ৩ সেন্ট জেমসমন্টেগো বে  ৫৯৫ ৮ সেন্ট অ্যানসেন্ট অ্যানস বে১,২১৩ ১৩ সেন্ট অ্যান্ড্রুহাফ ওয়ে ট্রি৪৫৩ ৪ ট্রেলুনিফালমাউথ  ৮৭৫ ৯ সেন্ট ক্যাথরিনস্প্যানিশ টাউন১,১৯২ ১৪ সেন্ট টমাসমরান্ট বে৭৪৩ ৫ ওয়েস্টমোরল্যান্ডসাভানা-লা-মার  ৮০৭ ১০ সেন্ট মেরিপোর্ট মারিয়া   ৬১১ ভূগোল এবং পরিবেশ বাম|থাম্ব|ব্লু পর্বতমালা|216x216পিক্সেল থাম্ব|মন্টেগো উপসাগরের একটি জনপ্রিয় গন্তব্য ডক্টরস কেভ বিচ ক্লাব। থাম্ব|জ্যামাইকার ওচো রিওসে ডানস নদীর জলপ্রপাত জ্যামাইকা ক্যারিবীয় অঞ্চলের তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। এটি ১৭° ও ১৯° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৭৬° ও ৭৯° পশ্চিম দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। জ্যামাইকার পর্বতগুলি এর অভ্যন্তরে আধিপত্য বিস্তার করে, যেমন পশ্চিমে ডন ফিগুয়েরো, সান্তা ক্রুজ এবং মে ডে পর্বত, কেন্দ্রে ড্রাই হারবার পর্বত এবং পূর্বে জন ক্রো পর্বত এবং ব্লু পর্বত, এর পরে ব্লু পর্বতের চূড়া, যা জ্যামাইকার সবচেয়ে উঁচু পর্বত এবং এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ২,২৫৬ মিটার উঁচু। এইসব পর্বতমালা একটি সরু উপকূলীয় সমভূমি দ্বারা বেষ্টিত। জ্যামাইকার কেবল দুটি প্রধান শহর আছে, প্রথমটি হল কিংস্টন, যা জ্যামাইকার রাজধানী শহর ও ব্যবসার কেন্দ্র এবং এটি জ্যামাইকার দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত। দ্বিতীয়টি হল মন্টেগো বে, যা মূলত পর্যটনের জন্য ক্যারিবীয় অঞ্চলের অন্যতম জনপ্রিয় শহর এবং এটি জ্যামাইকার উত্তর উপকূলে অবস্থিত। কিংস্টন পোতাশ্রয় পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম প্রাকৃতিক বন্দর, যা ১৮৭২ সালে শহরটিকে রাজধানী হিসেবে নির্বাচন করতে অবদান রেখেছিল। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য শহরগুলির মধ্যে রয়েছে পোর্টমোর, স্প্যানিশ টাউন, সাভানা লা মার, ম্যান্ডেভিল এবং অবসর বিনোদনের শহর যেমন ওচো রিওস, পোর্ট আন্তোনিও এবং নেগ্রিল। পোর্ট রয়েল, ১৬৯২ সালে এই স্থানে একটি বড় ভূমিকম্পে এই দ্বীপের প্যালিসাডো বালির বার গঠনে সহায়তা করেছিল। স্থলজগত, জলজ ও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে শুষ্ক ও ভেজা চুনাপাথরের বন, রেইন ফরেস্ট, তীরবর্তী বনভূমি, জলাভূমি, গুহা, নদী, সামুদ্রিক ঘাস এবং প্রবাল প্রাচীর অন্যতম। জ্যামাইকার কর্তৃপক্ষ পরিবেশের অসাধারণ তাৎপর্য এবং সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং আরো কিছু "উর্বর" অঞ্চলকে "সুরক্ষিত" হিসেবে মনোনীত করেছিল। দ্বীপের সুরক্ষিত এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে ককপিট কান্ট্রি, হেলশায়ার পাহাড় এবং লিচফিল্ড সংরক্ষিত বনভূমি। ১৯৯২ সালে, জ্যামাইকার প্রথম সামুদ্রিক পার্ক, যা প্রায় ১৫ বর্গ কিলোমিটার (৫.৮ বর্গ মাইল) জুড়ে, মন্টেগো উপসাগরে তৈরি করা হয়েছিল। পোর্টল্যান্ড উপসাগর সুরক্ষিত এলাকা ১৯৯৯ সালে মনোনীত হয়েছিল। পরের বছর ব্লু এবং জন ক্রো মাউন্টেনস ন্যাশনাল পার্ক তৈরি করা হয়েছিল, যা প্রায় ৩০০ বর্গ মাইল (৭৮০ কিমি২) একটি উপবন এলাকা জুড়ে যা কয়েক হাজার গাছ এবং ফার্ন প্রজাতি এবং বিরল প্রাণীদের সহায়তা করে। জ্যামাইকার উপকূলে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট দ্বীপ রয়েছে, বিশেষ করে পোর্টল্যান্ড উপসাগরে যেমন পিজিওন দ্বীপ, সল্ট দ্বীপ, ডলফিন দ্বীপ, লং দ্বীপ, গ্রেট গোট দ্বীপ এবং লিটল গোট দ্বীপ এবং আরও পূর্বে অবস্থিত লাইম প্রবালপ্রাচীর। অনেক দূরে, দক্ষিণ উপকূল থেকে প্রায় ৫০-৮০ কিমি দূরে খুব ছোট মোরান্ট প্রবালপ্রাচীর এবং পেড্রো প্রবালপ্রাচীর অবস্থিত। জলবায়ু থাম্ব|জ্যামাইকার কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিভাগ। জ্যামাইকার জলবায়ু উষ্ণ এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আর্দ্র আবহাওয়া বিদ্যমান, যদিও অপেক্ষাকৃত উঁচু অভ্যন্তরীণ অঞ্চলগুলি নাতিশীতোষ্ণ। দক্ষিণ উপকূলের কিছু অঞ্চল, যেমন লিগুয়ানিয়া সমভূমি এবং পেড্রো সমভূমি তুলনামূলকভাবে শুষ্ক বৃষ্টিচ্ছায় এলাকা। জ্যামাইকা আটলান্টিক মহাসাগরের হারিকেন অঞ্চলে অবস্থিত এবং এর কারণে দ্বীপটি মাঝে মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঝড়ের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। হারিকেন চার্লি এবং গিলবার্ট যথাক্রমে ১৯৫১ এবং ১৯৮৮ সালে জ্যামাইকাতে আঘাত হেনেছিল, যার ফলে বড় ক্ষতি হয়েছিল এবং অনেক মানুষ মারা গিয়েছিল। ২০০০ দশকে, হারিকেন ইভান, ডিন এবং গুস্তাভ দ্বীপে গুরুতর আবহাওয়া নিয়ে এসেছিল। উদ্ভিদ ও প্রাণীজগত থাম্ব|জ্যামাইকার জাতীয় পাখি, একটি লাল ঠোঁটওয়ালা স্ট্রিমারটেইল থাম্ব|জ্যামাইকান বোয়া সাপ থাম্ব|জ্যামাইকার প্যারোট মাছ জ্যামাইকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু উদ্ভিদ এবং প্রাণীর সম্পদ সহ বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রকে সমর্থন করে। জ্যামাইকার উদ্ভিদ জীবন শতাব্দী ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে; ১৪৯৪ সালে যখন স্পেনীয়রা এসেছিল, ছোট কৃষি পরিষ্কারকরণ ছাড়া, দেশটি গভীরভাবে বন-জঙ্গলে ঘেরা ছিল। ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারীরা দালান এবং জাহাজের কাঠামো সরবরাহের জন্য বিশাল কাঠের গাছ কেটে ফেলতো এবং কৃষি চাষের জন্য অনেক সমতল, বৃক্ষহীন তৃণভূমি এবং পাহাড়ের ঢাল পরিষ্কার করেছিল। আখ, কলা, এবং সাইট্রাস গাছ সহ অনেক নতুন উদ্ভিদ এই দ্বীপে পরিচয় করা হয়েছিল। জ্যামাইকায় প্রায় ৩,০০০ প্রজাতির দেশীয় সপুষ্পক উদ্ভিদ রয়েছে (যার মধ্যে ১,০০০ এরও বেশি স্থানীয় এবং ২০০ টি অর্কিডের প্রজাতি),হাজারখানেক প্রজাতির অ-ফুল উদ্ভিদ এবং প্রায় ২০টি উদ্ভিদ উদ্যান, যার মধ্যে কয়েকটি শত বছরের পুরনো। ভারী বৃষ্টিপাতের এলাকায় বাঁশ, ফার্ন, আবলুস, মেহগনি এবং রোজউডের গাছ পাওয়া যায়। ক্যাকটাস এবং অনুরূপ শুষ্ক অঞ্চলের গাছপালা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অঞ্চলগুলি বড় তৃণভূমি নিয়ে গঠিত, যেখানে গাছের বিক্ষিপ্ত উপস্থিতি রয়েছে। জ্যামাইকায় তিনটি স্থলীয় বাস্তুসংস্থান, জ্যামাইকান আর্দ্র বন, জ্যামাইকান শুকনো বন এবং বৃহত্তর অ্যান্টিলেস ম্যানগ্রোভ রয়েছে। এটি ২০১৯ সালে ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ ইন্টিগ্রিটি ইনডেক্সের গড় স্কোর ৫.০১/১০ ছিল, যা ১৭২টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১১০ তম স্থান পেয়েছে। জ্যামাইকার প্রাণীকুলের মধ্যে বেশিরভাগ ক্যারিবীয় প্রজাতির, তবে অনেক স্থানীয় প্রজাতির সঙ্গে অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণীও বাস করে। অন্যান্য মহাসাগরীয় দ্বীপের মতো, স্থল স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে বেশিরভাগ বাদুড়ের বিভিন্ন প্রজাতি যার মধ্যে কমপক্ষে তিনটি স্থানীয় প্রজাতি যা শুধুমাত্র ককপিট প্রদেশে পাওয়া যায়, যার মধ্যে একটি ঝুঁকিপূর্ণ। বাদুড়ের অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে রয়েছে ডুমুর-খাওয়া বাদুড় এবং লোমসহ লেজযুক্ত বাদুড়। জ্যামাইকায় একমাত্র বাদুড় নয় এমন স্থানীয় স্তন্যপায়ী প্রাণী হল জ্যামাইকান হুটিয়া, যা স্থানীয়ভাবে শঙ্কু() নামে পরিচিত। প্রবর্তিত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে বন শুকর এবং ছোট এশিয় বেজি অন্যতম। জ্যামাইকাতে প্রায় ৫০ প্রজাতির সরীসৃপের বাসস্থান, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হল আমেরিকান কুমির, এটি শুধুমাত্র ব্ল্যাক নদী এবং অন্যান্য কয়েকটি এলাকায় পাওয়া যায়। টিকটিকির মধ্যে অ্যানোলস, ইগুয়ানা প্রজাতি এবং সাপের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে রেসার এবং জ্যামাইকান বোয়া (দ্বীপের সবচেয়ে বড় সাপ) অন্যতম, যা ককপিট প্রদেশের মতো এলাকায় সাধারণত পাওয়া যায়। জ্যামাইকার আট প্রজাতির স্থানীয় প্রজাতির সাপের কোনোটিই বিষাক্ত নয়। জ্যামাইকায় প্রায় ২৮৯ প্রজাতির পাখি রয়েছে যার মধ্যে ২৭টি বিপন্ন কালো ঠোটযুক্ত তোতাপাখি এবং জ্যামাইকান ব্ল্যাকবার্ড এবং এই দুইটি পাখি শুধু ককপিট প্রদেশে পাওয়া যায়। এটি হামিংবার্ডের চারটি প্রজাতির আদি বাসস্থান (যার মধ্যে তিনটি বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না): কালো ঠোটযুক্ত স্ট্রিমারটেল, জ্যামাইকান ম্যঙ্গো, ভেরভেইন হামিংবার্ড এবং লাল ঠোটযুক্ত স্ট্রিমারটেল। লাল ঠোটযুক্ত স্ট্রিমারটেল, যা স্থানীয়ভাবে "ডাক্তার পাখি" নামে পরিচিত, এটি জ্যামাইকার জাতীয় প্রতীক হিসাবে গণ্য করা হয়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রজাতির মধ্যে রয়েছে জ্যামাইকান টডি এবং বড় ফ্লেমিঙ্গো। মিঠা পানির কচ্ছপের মধ্যে একটি জ্যামাইকার স্থানীয় প্রজাতি হল জ্যামাইকান স্লাইডার। এটি শুধুমাত্র জ্যামাইকা এবং বাহামা দ্বীপপুঞ্জের কয়েকটি দ্বীপে পাওয়া যায়। এছাড়াও দ্বীপে অনেক ধরনের ব্যাঙ পাওয়া যায়, তাদের মধ্যে গাছব্যাঙ অন্যতম। জ্যামাইকার জলজ উৎসে মিঠা এবং লোনা পানির মাছের যথেষ্ট মৎস্য সম্পদ আছে। লোনা পানির মাছের প্রধান জাতগুলোর মধ্যে কিংফিশ, জ্যাক, ম্যাকেরেল, হোয়াইটিং, বনিটো এবং টুনা অন্যতম। মাছ যা মাঝে মাঝে মিঠা পানিতে প্রবেশ করে এবং মোহনার পরিবেশের মধ্যে রয়েছে স্নুক, জিউফিশ, ম্যানগ্রোভ স্ন্যাপার এবং মাললেট। জ্যামাইকার মিঠাপানির যেসব মাছ রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে লাইভবিয়্যার্সের অনেক প্রজাতি, কিলিফিশ, মিঠা পানির গোবি, মাউন্টেন্ট মাললেট এবং আমেরিকান ঈল অন্যতম। তেলাপিয়া আফ্রিকা থেকে এনে পুকুর চাষের জন্য চালু করা হয়েছিল যা এখন স্থানীয়দের মাঝে সাধারণ হয়ে গেছে। জ্যামাইকার তীরবর্তী অঞ্চলে ডলফিন, প্যারোট মাছ এবং বিপন্ন সমুদ্রগাভী দেখা যায়। পোকামাকড় এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণী জ্যামাইকাতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম শতপদী(), যেমন আমাজনের বড় শতপদী। জ্যামাইকায় প্রায় ১৫০ প্রজাতির প্রজাপতি এবং পতঙ্গের বাসস্থান, যার মধ্যে ৩৫টি দেশীয় প্রজাতি এবং ২২টি উপ-প্রজাতি রয়েছে। এটি পশ্চিম গোলার্ধের বৃহত্তম প্রজাপতি জ্যামাইকান সোয়েলটেইলের আদি নিবাস। জলজ জীবন প্রবালপ্রাচীর বাস্তুতন্ত্রগুলি গুরুত্বপূর্ণ কারণ তারা মানুষকে জীবিকা, খাদ্য, বিনোদন এবং ঔষধি যৌগের উৎস প্রদান করে এবং বাসভূমিকে রক্ষা করে। জ্যামাইকা তার উন্নয়নের জন্য সাগর এবং সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের উপর নির্ভর করে। তবে জ্যামাইকার সামুদ্রিক জীবন প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন অনেক কারণ থাকতে পারে যা সামুদ্রিক জীবনযাত্রায় অবদান রাখে কিন্তু তা প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জ্যামাইকার ভূতাত্ত্বিক উৎপত্তি, ভূসংস্থান-সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্য এবং ঋতুভিত্তিক উচ্চ বৃষ্টিপাত যা উপকূলীয় এবং মহাসাগরীয় পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে এমন প্রাকৃতিক বিপদের একটি সীমার জন্য সংবেদনশীল করে তোলে। এর মধ্যে রয়েছে ঝড় ঢেউ, ঢাল বিপর্যয় (ভূমিধস), ভূমিকম্প, বন্যা এবং হারিকেন। জ্যামাইকার নেগ্রিল মেরিন পার্ক (এনএমপি) -তে প্রবাল প্রাচীরগুলি প্রধানত পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে কয়েক দশকের নিবিড় বিকাশের পর পুষ্টি দূষণ এবং ম্যাক্রোয়ালগল ফুল দ্বারা ক্রমবর্ধমানভাবে প্রভাবিত হয়েছে। আরেকটি কারণের মধ্যে পর্যটন অন্তর্ভুক্ত হতে পারে: যেহেতু জ্যামাইকা একটি খুব পর্যটন স্থান, দ্বীপটি সারা বিশ্ব থেকে এখানে ভ্রমণকারী অসংখ্য মানুষকে আকর্ষণ করে। জ্যামাইকার পর্যটন শিল্প মোট কর্মসংস্থানের ৩২% এবং দেশের জিডিপির ৩৬% এবং এটি মূলত সূর্যের আলো, সমুদ্র ও বালির উপর ভিত্তি করে, এই দুটি বৈশিষ্ট্য সুস্থ প্রবাল প্রাচীর বাস্তুতন্ত্রের উপর নির্ভরশীল। জ্যামাইকার পর্যটনের কারণে, তারা পর্যটক তাদের সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র পরিচালনার জন্য আর্থিকভাবে সাহায্য করতে ইচ্ছুক কিনা তা দেখার জন্য একটি গবেষণা তৈরি করেছে কারণ জ্যামাইকা একা বাস্তুতন্ত্র পরিচালনা করার জন্য অক্ষম। জ্যামাইকা একটি বিশেষ পর্যটন স্থান বিশেষত তাদের সৈকতের কারণে। যদি পার্শ্ববর্তী মহাসাগরগুলি তাদের সর্বোত্তমভাবে কাজ না করে তবে জ্যামাইকা এবং সেখানে বসবাসকারী লোকদের কল্যাণ অবনতি হতে শুরু করবে। ওইসিডি অনুসারে, সামগ্রিক অর্থনীতিতে মহাসাগরগুলি মূল্য সংযোজন করতে বছরে ১.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অবদান রাখে। একটি উন্নয়নশীল দ্বীপরাষ্ট্র হিসাবে জ্যামাইকা তাদের মহাসাগর থেকে তাদের রাজস্বের সিংহভাগ পাবে। দূষণ দূষণ মূলত আসে জলযুক্ত নালা, নর্দমার ময়লা জল এবং আবর্জনা থেকে। যাইহোক, সাধারণত বৃষ্টি বা বন্যার পরে এই সব সমুদ্রে প্রবাহিত হয়। জলে শেষ হওয়া সবকিছুই সমুদ্রের গুণমান এবং ভারসাম্য পরিবর্তন করে। উপকূলীয় পানির নিম্ন মান মৎস্য, পর্যটন এবং কৃষিকাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, সেইসাথে সমুদ্র ও উপকূলীয় আবাসস্থলের জীব সম্পদের জৈবিক স্থিতিশীলতা হ্রাস করে ও বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতিসাধন করে। জ্যামাইকা তাদের জলপথের মাধ্যমে অনেক পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করে। জ্যামাইকায় যেসব আমদানি হয় তার মধ্যে রয়েছে পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য। সমুদ্রে দুর্ঘটনার কারণে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়, যেমন পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যগুলি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিবহনের মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকে যায়। তেল ছড়িয়ে পরার ফলে সামুদ্রিক বিভিন্ন জীবের জীবন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে ব্যাহত হতে পারে। জ্যামাইকায় অন্যান্য ধরনের দূষণও ঘটে। জ্যামাইকার কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশন প্রক্রিয়া বর্তমানে অপর্যাপ্ত অবস্থায় আছে। বর্জ্য শক্তির মাধ্যমে কঠিন বর্জ্য পানিতে প্রবেশ করে। কঠিন বর্জ্য বিভিন্ন প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর, বিশেষ করে পাখি, মাছ এবং কচ্ছপ যা পানির পৃষ্ঠে খাওয়ার এবং খাদ্যের জন্য ভাসমান ধ্বংসাবশেষ হিসাবে ভুল করে। উদাহরণস্বরূপ, পাখি এবং কচ্ছপের ঘাড়ের চারপাশে প্লাস্টিক ধরা যেতে পারে যা খাওয়া এবং তাদের শ্বাস নিতে কষ্টের কারণ হতে পারে। কারণ তারা বাড়তে শুরু করলে, প্লাস্টিক তাদের গলায় শক্ত হয়ে যায়। প্লাস্টিক, ধাতু এবং কাচের টুকরা মাছের খাবার খাওয়ার জন্য ভুল হতে পারে। প্রতিটি জ্যামাইকান প্রতিদিন প্রায় ১ কেজি (২ পাউন্ড) বর্জ্য উৎপন্ন করে; এর মাত্র ৭০% জাতীয় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনএসডব্লিউএমএ) সংগ্রহ করে - বাকি ৩০% হয় পোড়ানো হয় বা নালাপথ বা জলপথে নিষ্পত্তি করা হয়। পরিবেশগত নীতি সাগর এবং পানির নীচে প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। জ্যামাইকার সমন্বিত উপকূলীয় অঞ্চল ব্যবস্থাপনা (আইসিজেডএম) এর লক্ষ্য হল উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের জীব বৈচিত্র্য এবং উৎপাদনশীলতা বজায় রেখে উপকূলীয় সম্পদের উপর নির্ভরশীলতার মাধ্যমে মানব সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নত করা। একটি অনুন্নত দেশের উন্নয়ন সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে কারণ দেশের উন্নয়নের জন্য যে সমস্ত নির্মাণ করা হবে তা সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন করতে পারে। অতিরিক্ত দালান, ক্ষমতাশালী বাজার প্রভাব দ্বারা চালিত এবং জনসংখ্যার কিছু বিভাগের মধ্যে দারিদ্র্য এবং ধ্বংসাত্মক শোষণ মহাসাগর এবং উপকূলীয় সম্পদের পতনে অবদান রাখে। উন্নয়নশীল পদক্ষেপগুলি যা মানুষের জীবনে অবদান রাখবে কিন্তু সমুদ্র ও এর বাস্তুতন্ত্রের জীবনেও কোন ক্ষতিসাধন করবে না এমন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে জ্যামাইকা উপকূলীয় অঞ্চল ব্যবস্থাপনা করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে কিছু পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে: টেকসই মৎস্য চর্চা বিকাশ, টেকসই কৃষি কৌশল এবং অনুশীলন নিশ্চিত করা, জলযানগুলোর টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই পর্যটন পদক্ষেপগুলিকে উন্নীত করা ইত্যাদি। পর্যটন হল জ্যামাইকায় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের এক নম্বর উৎস এবং জাতীয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটকরা সাধারণত সমস্যা সম্পর্কে অজ্ঞাত থেকে এই দেশগুলিতে যান এবং তারা সমস্যাগুলিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। কারণ পর্যটকরা তাদের নিজস্ব দেশের তুলনায় ভিন্ন রীতিতে বসবাস করতে অভ্যস্ত হয় না। তবে জ্যামাইকা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যেমন: সমস্ত পর্যটন এলাকার জন্য নর্দমা শোধনাগার সুবিধা প্রদান, পর্যটন ক্রিয়াকলাপের পরিকল্পনা করার আগে পরিবেশের বহন ক্ষমতা নির্ধারণ, বিকল্প ধরনের পর্যটন ক্রিয়াকলাপ সরবরাহ করা পছন্দসই ফলাফল পেতে সাহায্য করতে পারে যেমন বিকল্প পর্যটন বিকাশ যা বর্তমান চাপ কমাবে, ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কার্যক্রম সমর্থন করে এমন সম্পদের উপর জোর দেওয়া ইত্যাদি। জ্যামাইকায় সমুদ্র ও উপকূলীয় ব্যবস্থাপনায় টেকসই অর্থায়নে পর্যটক কীভাবে সাহায্য করতে পারে তা দেখার জন্য একটি গবেষণা করেছিল। জ্যামাইকা পর্যটন ফি শব্দ ব্যবহার না করে তারা পরিবেশগত ফি বলবে যাতে পর্যটকরা পরিবেশের উপর গুরুত্ব প্রদান করে। এই গবেষণার লক্ষ্য পরিবেশগত ফি বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা এবং দ্বীপের বর্তমান পর্যটক ভ্রমণের হারের উপর এই জাতীয় রাজস্ব উৎপাদনের উপকরণের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের অবহিত করা। একটি ব্যবহারকারী ফি সিস্টেমের উন্নয়ন পরিবেশ ব্যবস্থাপনা এবং সুরক্ষার জন্য তহবিল যোগাতে সাহায্য করবে। ফলাফলগুলি দেখায় যে পর্যটকদের একটি উচ্চ ভোক্তা উদ্বৃত্ত জ্যামাইকায় অবকাশের সাথে যুক্ত এবং একটি পরিবেশগত করের তুলনায় একটি পর্যটন কর প্রদানের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে কম ইচ্ছা প্রকাশ করে। গবেষণার ফলাফলগুলি দেখায় যে করের "লেবেল" এবং সেইসাথে পরিবেশবাদী সুরক্ষা এবং পর্যটনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে উত্তরদাতার সচেতনতা তাদের সিদ্ধান্তের কাঠামোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটকরা ভ্রমণ কর না দিয়ে পরিবেশগত ফি দিতে বেশি ইচ্ছুক। পরিবেশ ব্যবস্থাপনা এবং সুরক্ষার জন্য তহবিলের জন্য যথেষ্ট কর কিন্তু জ্যামাইকায় পর্যটক আকর্ষণীয় করার জন্য যথেষ্ট কম। এটিতে দেখানো হয়েছে যে যদি প্রতি জন ১ মার্কিন ডলারের একটি পরিবেশগত কর চালু করা হয় তবে এটি দর্শনীয় হারে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে না এবং প্রায় ১.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে। জনসংখ্যাতাত্ত্বিক জাতিগত উৎপত্তি থাম্ব|জ্যামাইকার জনসংখ্যা, ১৯৬১-২০০৩ থাম্ব|মন্টেগো বে, জ্যামাইকার দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর জাতিগত গোষ্ঠী%জনসংখ্যাকৃষ্ণাঙ্গ বা মিশ্র কৃষ্ণাঙ্গ৯২.১%২৬,৬১,৯৬৫মিশ্র (কৃষ্ণাঙ্গ নয় এমন)৬.১%১,৭৬,৩০৮এশীয়০.৮%২৩,১২২অন্যান্য০.৪%১১,৫৬১অনির্ধারিত০.৭%২০,২৩২ জ্যামাইকার বৈচিত্র্যপূর্ণ জাতিগত শিকড় জাতীয় নীতিবাক্যে (আউট অফ মেনি ওয়ান পিপল) প্রতিফলিত হয়েছে। ২৮,১২,০০০ জনসংখ্যার অধিকাংশ (জুলাই ২০১৮ অনুসারে) আফ্রিকান বা আংশিকভাবে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অনেকে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানা এবং নাইজেরিয়ায় তাদের উৎপত্তির সন্ধান করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যান্য প্রধান পৈতৃক এলাকা হল ইউরোপ, দক্ষিণ এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়া। জ্যামাইকানরা জাতি হিসাবে নিজেদেরকে জাতি হিসাবে চিহ্নিত করাকে অস্বাভাবিক মনে করে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো অন্যান্য দেশে বিশিষ্ট, বেশিরভাগ জ্যামাইকানরা জ্যামাইকান জাতীয়তাকে নিজের পরিচয় হিসাবে দেখে, জাতিগতভাবে নির্বিশেষে "জ্যামাইকান" হিসাবে চিহ্নিত করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে দ্বীপে গড় মিশ্রণ ৭৮.৩% সাব-সাহারান আফ্রিকান, ১৬.০% ইউরোপীয় এবং ৫.৭% পূর্ব এশীয়। ২০২০ সালের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত জ্যামাইকানরা জনসংখ্যার ৭৬.৩% প্রতিনিধিত্ব করে, তারপরে ১৫.১% আফ্রো-ইউরোপীয়, ৩.৪% পূর্ব ভারতীয় এবং আফ্রো-পূর্ব ভারতীয়, ৩.২% ককেশীয়, ১.২% চীনা এবং ০.৮% অন্যান্য। এক্কোম্পোঙ এবং অন্যান্য বসতিগুলির জ্যামাইকান মেরুনরা আফ্রিকান ক্রীতদাসদের বংশধর যারা নিজস্ব স্বায়ত্তশাসিত সম্প্রদায় স্থাপন করার জন্য উপনিবেশ শাসন থেকে জ্যামাইকার অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি ও বনাঞ্চলে পালিয়ে গিয়েছিল।Michael Sivapragasam, After the Treaties: A Social, Economic and Demographic History of Maroon Society in Jamaica, 1739–1842 , PhD Dissertation, African-Caribbean Institute of Jamaica library (Southampton: Southampton University, 2018), pp. 23–24.E. Kofi Agorsah, "Archaeology of Maroon Settlements in Jamaica", Maroon Heritage: Archaeological, Ethnographic and Historical Perspectives, ed. E. Kofi Agorsah (Kingston: University of the West Indies Canoe Press, 1994), pp. 180–81.Craton, Michael. Testing the Chains. Cornell University Press, 1982, p. 70. অনেক মেরুন তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য অব্যাহত রেখেছে এবং তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলে, যা স্থানীয়ভাবে ক্রোমান্তি নামে পরিচিত। ইন্দো-জ্যামাইকান এবং চীনা জ্যামাইকানদের অন্তর্ভুক্ত করে এশীয়রা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল গঠন করে।The World Factbook CIA (The World Factbook): Jamaica ব্রিটিশ উপনিবেশিক সরকার ১৮৩৮ সালে দাসত্ব বিলুপ্তির পর শ্রমিকের ঘাটতি পূরণের জন্য আনা চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের অধিকাংশই বংশধর জ্যামাইকাতে থেকে গেছে। বিশিষ্ট ভারতীয় জ্যামাইকানদের মধ্যে আছেন জকি শন ব্রিজমোহন, যিনি কেনটাকি ডার্বিতে প্রথম জ্যামাইকান ছিলেন, এনবিসি নাইটলি নিউজের সাংবাদিক লেস্টার হোল্ট এবং মিস জ্যামাইকা ওয়ার্ল্ড এবং বিশ্ব সুন্দরী বিজয়ী ইয়েন্দি ফিলিপস। ওয়েস্টমোরল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা ইন্দো-জ্যামাইকানদের বিশাল জনসংখ্যার জন্য বিখ্যাত। তাদের ভারতীয় প্রতিপক্ষের পাশাপাশি, চীনা জ্যামাইকানরাও জ্যামাইকার সম্প্রদায় এবং ইতিহাসে অবিচ্ছেদ্যের ভূমিকা পালন করেছে। এই গোষ্ঠীর বিশিষ্ট বংশধরদের মধ্যে রয়েছে কানাডার বিলিয়নিয়ার বিনিয়োগকারী মাইকেল লি-চিন, সুপার মডেল নেওমি ক্যাম্পবেল এবং টাইসন বেকফোর্ড এবং ভিপি রেকর্ডসের প্রতিষ্ঠাতা ভিনসেন্ট "র‍্যান্ডি" চিন। লেবানন এবং সিরিয়ার বংশধরের প্রায় ২০,০০০ জ্যামাইকান আছে। এদের বেশিরভাগ খ্রিস্টান অভিবাসী ছিলেন যারা ১৯ শতকের গোড়ার দিকে লেবাননের উসমানীয় সাম্রাজ্য থেকে পালিয়ে এসেছিল। অবশেষে তাদের বংশধররা খুব সফল রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী হয়ে ওঠে। এই গোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য জ্যামাইকানদের মধ্যে রয়েছে জ্যামাইকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড সিগা, জ্যামাইকান রাজনীতিবিদ এবং প্রাক্তন বিশ্ব সুন্দরী লিসা হানা, জ্যামাইকান রাজনীতিবিদ এডওয়ার্ড জাকা এবং শাহিন রবিনসন এবং হোটেল ব্যবসায়ী আব্রাহাম ইলিয়াস ইসা। ১৮৩৫ সালে চার্লস এলিস, ১ম ব্যারন সীফোর্ড তার ১০,০০০ একর জমির মধ্যে ৫০০ একর ওয়েস্টমোরল্যান্ডে সিফোর্ড শহর জার্মান বন্দোবস্তের জন্য দিয়েছিলেন। আজ শহরের বেশিরভাগ বংশধরই সম্পূর্ণ বা আংশিক জার্মান বংশোদ্ভূত। ইংরেজ অভিবাসীদের প্রথম ঢেউ স্পেনীয়দের জয় করার পর ১৬৫৫ সালে দ্বীপে এসেছিল এবং তারা ঐতিহাসিকভাবে প্রভাবশালী গোষ্ঠী ছিল। এই গোষ্ঠীর বিশিষ্ট বংশধরদের মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্কের প্রাক্তন মার্কিন গভর্নর ডেভিড প্যাটারসন, স্যান্ডেলস হোটেলের মালিক গর্ডন বুচ স্টুয়ার্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা এবং পেল গ্রান্টের মা লুইস রাইস এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত সুসান রাইস। প্রথম আইরিশ অভিবাসীরা ১৬০০ দশকে জ্যামাইকাতে যুদ্ধবন্দী হিসেবে এসেছিল এবং পরবর্তীতে তাদের শ্রমিক হওয়ার জন্য বাধ্য করা হয়েছিল। তাদের বংশধরদের মধ্যে রয়েছে জ্যামাইকার দুইজন জাতীয় নায়ক: প্রধানমন্ত্রী মাইকেল ম্যানলি এবং আলেকজান্ডার বুস্তামান্তে। ইংরেজ এবং আইরিশদের পাশাপাশি স্কটরা হল আরেকটি গোষ্ঠী যারা দ্বীপে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। স্কটল্যান্ড থেকে প্রথম জ্যামাইকান অধিবাসীরা নির্বাসিত বিদ্রোহী ছিল। পরবর্তীতে, তারা উচ্চাভিলাষী ব্যবসায়ীদের দ্বারা অনুসরণ করে যারা স্কটল্যান্ড এবং দ্বীপে তাদের দেশের সম্পত্তির মধ্যে সময় কাটায়। ফলস্বরূপ, দ্বীপে অনেক ক্রীতদাসের মালিক ছিল স্কটিশ পুরুষ এবং এইভাবে মিশ্র-জাতি জামাইকানদের একটি বড় সংখ্যা স্কটিশ বংশ দাবি করতে পারে। স্কটিশ-জ্যামাইকানদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে আছেন ব্যবসায়ী জন প্রিঙ্গেল, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল এবং মার্কিন অভিনেত্রী কেরি ওয়াশিংটন। থাম্ব|জ্যামাইকার রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর কিংস্টনের উত্তরাঞ্চল জ্যামাইকাতে উল্লেখযোগ্য হারে পর্তুগিজ জ্যামাইকান জনসংখ্যাও রয়েছে যা প্রধানত সেফারডিক ইহুদি ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত। প্রথম ইহুদিরা খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য বা মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পর ১৫ শতকে স্পেন থেকে অভিযাত্রী হিসাবে এসেছিল। তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক ক্রীতদাস মালিক এবং এমনকি বিখ্যাত জলদস্যু হয়ে ওঠে। ইহুদি ধর্ম অবশেষে জ্যামাইকায় খুব প্রভাবশালী হয়ে ওঠে এবং বর্তমানে জ্যামাইকাতে অনেক ইহুদি কবরস্থান দেখা যায়। বিখ্যাত ইহুদি বংশধরদের মধ্যে রয়েছে ড্যান্সহল শিল্পী সন পল, প্রাক্তন রেকর্ড প্রযোজক এবং আইল্যান্ড রেকর্ডসের প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস ব্ল্যাকওয়েল এবং জ্যাকব ডি কর্ডোভা যিনি ডেইলি গ্লেনার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জ্যামাইকাতে অভিবাসন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানত চীন, হাইতি, কিউবা, কলম্বিয়া এবং লাতিন আমেরিকা থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীরা আসছে; ২০,০০০ লাতিন আমেরিকান জ্যামাইকাতে বসবাস করে। ২০১৬ সালে, প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেস স্পেনীয় ভাষা জ্যামাইকার দ্বিতীয় সরকারী ভাষা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। দ্বীপে সংযোগের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য মার্কিনদের মধ্যে রয়েছে ফ্যাশন দুনিয়ার জনপ্রিয় রালফ লরেন, সমাজসেবী ডেইজি সোরোস, ব্ল্যাকস্টোনের শোয়ার্জম্যান পরিবার, ডেলাওয়্যারের প্রয়াত লেফটেন্যান্ট গভর্নর জন ডব্লিউ রোলিন্সের পরিবার, ফ্যাশন ডিজাইনার ভেনেসা নোয়েল, বিনিয়োগকারী গাই স্টুয়ার্ট, এডওয়ার্ড এবং প্যাট্রিসিয়া ফ্যালকেনবার্গ এবং আইহার্ট মিডিয়ার সিইও বব পিটম্যান, যাদের সকলেই জ্যামাইকা দ্বীপটিকে সমর্থন করার জন্য বার্ষিক দাতব্য অনুষ্ঠান করেন। ভাষাসমূহ জ্যামাইকা একটি দ্বিভাষিক দেশ হিসাবে গণ্য করা হয়, যেখানে জনসংখ্যার দ্বারা দুটি প্রধান ভাষা ব্যবহৃত হয়।Ronald C. Morren and Diane M. Morren (2007). Are the goals and objectives of Jamaica's Bilingual Education Project being met?" – SIL International (working paper). Retrieved 31 August 2015. সরকারী ভাষা হল ইংরেজি, যা সরকার, আইনি ব্যবস্থা, গণমাধ্যম এবং শিক্ষাসহ "জনজীবনের সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়"। যাইহোক, প্রাথমিক কথ্য ভাষা হল একটি ইংরেজি-ভিত্তিক ক্রেওল যাকে বলা হয় জ্যামাইকান পাতোইস (বা পাতোয়া)। দুটির একটি উপভাষা ধারাবাহিকতায় বিদ্যমান, বক্তারা প্রসঙ্গের ভিত্তিতে এবং তারা কার সাথে কথা বলছেন তার উপর নির্ভর করে বক্তৃতার একটি ভিন্ন নিবন্ধ ব্যবহার করে। "বিশুদ্ধ" পাতোইস, যদিও কখনো এটি কেবলমাত্র একটি বিশেষভাবে ইংরেজির বিচ্ছিন্ন উপভাষা হিসাবে দেখা হয়, এটি মূলত ইংরেজির সাথে পারস্পরিকভাবে বোধগম্য নয় এবং এটি একটি পৃথক ভাষা। জ্যামাইকান ল্যাঙ্গুয়েজ ইউনিটের ২০০৭ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে যে জনসংখ্যার ১৭.১ শতাংশ জ্যামাইকান প্রমিত ইংরেজিতে (জেএসই) একভাষিক, ৩৬.৫ শতাংশ পাতোয়াতে একভাষিক এবং ৪৬.৪ শতাংশ দ্বিভাষিক ছিল, যদিও এর আগে জরিপগুলি দ্বৈতত্বের একটি বৃহত্তর মানের দিকে নির্দেশ করেছিল (প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত)। জ্যামাইকান শিক্ষাব্যবস্থা সম্প্রতি পাতোইসে পরিবর্তিত হওয়ার আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেওয়া শুরু করেছে, যখন জেএসইকে "শিক্ষার সরকারী ভাষা" হিসাবে ধরে হয়েছে।Claude Robinson (30 March 2014). "English lessons for Jamaica" – Jamaica Observer. Retrieved 31 August 2015. কিছু জ্যামাইকান এক বা একাধিক জ্যামাইকান সাংকেতিক ভাষা (জেএসএল), আমেরিকান সাংকেতিক ভাষা (এএসএল) বা আদিবাসী জ্যামাইকান গ্রামাঞ্চল সাংকেতিক ভাষা (কোনচরি সাইন) ব্যবহার করে। জেএসএল এবং এএসএল উভয়ই বিভিন্ন কারণে দ্রুত কোনচরি সাইনকে প্রতিস্থাপন করছে। অভিবাসন অনেক জ্যামাইকান অন্য দেশে দেশান্তরিত হয়েছে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় চলে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে, প্রতি বছর প্রায় ২০,০০০ জ্যামাইকানদের স্থায়ী বাসস্থান দেওয়া হয়। পুয়ের্তো রিকো, গায়ানা, বাহামা, কিউবার মতো অন্যান্য ক্যারিবীয় দেশেও জ্যামাইকানদের অভিবাসন হয়েছে। ২০০৪ সালে অনুমান করা হয়েছিল যে ২.৫ মিলিয়ন জ্যামাইকান এবং জ্যামাইকান বংশধর বিদেশে বাস করে। যুক্তরাজ্যের জ্যামাইকানরা আনুমানিক ৮,০০,০০০ তাদের দেশটির বৃহত্তম আফ্রিকান-ক্যারিবীয় গোষ্ঠী দ্বারা তৈরি করে। জ্যামাইকা থেকে যুক্তরাজ্যে বড় আকারের অভিবাসন ঘটেছিল মূলত ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে যখন দেশটি ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল। যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ বড় শহরে জ্যামাইকান সম্প্রদায় বিদ্যমান। নিউইয়র্ক সিটি, বাফেলো, মিয়ামি মেট্রো এলাকা, আটলান্টা, শিকাগো, অরল্যান্ডো, ট্যাম্পা, ওয়াশিংটন ডিসি, ফিলাডেলফিয়া, হার্টফোর্ড, প্রভিডেন্স এবং লস এঞ্জেলেস সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য শহরে প্রবাসী জ্যামাইকানদের মনোযোগ বেশ উল্লেখযোগ্য।Jones, Terry-Ann. Jamaican Immigrants in the United States and Canada: Race, Transnationalism, and Social Capital. New York, NY: LFB Scholarly Piblishing LLC, 2008. 2–3; 160–3. Print. কানাডায়, জ্যামাইকান জনসংখ্যা টরন্টোতে কেন্দ্রীভূত তবে হ্যামিল্টন, মন্ট্রিল, উইনিপেগ, ভ্যাঙ্কুভার এবং অটোয়ার মতো জায়গায় ছোট ছোট সম্প্রদায় বাস করে। জ্যামাইকান কানাডিয়ানরা সমগ্র কৃষ্ণাঙ্গ কানাডিয়ান জনসংখ্যার প্রায় ৩০% নিয়ে গঠিত। উল্লেখযোগ্যভাবে ইথিওপিয়ান জ্যামাইকান অভিবাসীদের অনেক ছোট দল আছে, যাদের বেশিরভাগই রাস্তাফেরিয়ান, যাদের ধর্মতাত্ত্বিক বিশ্বদর্শন আফ্রিকা প্রতিশ্রুত ভূমি বা "সায়ন" বা আরো বিশেষভাবে ইথিওপিয়া, শ্রদ্ধার কারণে, যেখানে সাবেক ইথিওপীয় সম্রাট হাইল স্যালেসি অধিষ্ঠিত হয়েছিল। বেশিরভাগই রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে প্রায় ১৫০ মাইল (২৪০ কিমি) দক্ষিণে ছোট শহর শশামানে বাস করে। অপরাধ ১৯৬২ সালে যখন জ্যামাইকা স্বাধীনতা লাভ করে, তখন হত্যার হার প্রতি ১,০০,০০০ বাসিন্দার মধ্যে ৩.৯ ছিল, যা তৎকালীন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম হত্যার হার ছিল। ২০০৯ সালের মধ্যে এই হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি ১,০০,০০০ বাসিন্দার মধ্যে ৬২ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল, যা বিশ্বের অন্যতম। জ্যামাইকান বাহিনী দল বা "ইয়ার্ডিস" কে কেন্দ্র করে সংগঠিত অপরাধ, দলীয় সহিংসতা জ্যামাইকার একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে গিয়েছিল। জাতিসংঘের অনুমান অনুসারে, জ্যামাইকায় বহু বছর ধরে বিশ্বের অন্যতম হত্যার হার রয়েছে। জ্যামাইকার কিছু এলাকা, বিশেষ করে কিংস্টনের দরিদ্র এলাকা, মন্টেগো বে এবং অন্যান্য স্থানে উচ্চ মাত্রার অপরাধ ও সহিংসতার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০১১ সালের পরও কৌশলগত কর্মসূচি চালু হওয়ার পর ২০১০ সালে নিম্নমুখী প্রবণতা অনুসরণ করে হত্যার হার কমতে শুরু করে। ২০১২ সালে জ্যামাইকার জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় তথ্য অনুসারে জ্যামাইকাতে খুনের হার ৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল।Pachico, Elyssa (2012-3-30). "Jamaica Murder Rate Dropped 30% in 2012". InSightCrime: Organized Crime in the Americas. Retrieved 2012-12-1. তবুও ২০১৭ সালে হত্যাকাণ্ড আগের বছরের তুলনায় ২২% বেড়ে গিয়েছিল। অনেক জ্যামাইকান এলজিবিটি এবং আন্তঃলিঙ্গ মানুষের একটি বিরূপ রূপ হিসাবে মনে করে এবং সমকামীদের বিরুদ্ধে জনতার হামলার ঘটনা ঘটেছে। অসংখ্য উচ্চ-পদস্ত ডান্সহল এবং রাজ্ঞা শিল্পীরা স্পষ্টভাবে সমকামী পদ বৈশিষ্ট্যযুক্ত গান তৈরি করেছেন। জ্যামাইকাতে পুরুষ সমকামিতা অবৈধ এবং কারাদণ্ডের মাধ্যমে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রধান শহরসমূহ ধর্ম থাম্ব|ম্যান্ডেভিল চার্চ (আনুমানিক ১৮১৬), ম্যানচেস্টার প্যারিশের একটি অ্যাংলিকান গির্জা। খ্রিস্টধর্ম জ্যামাইকার বৃহত্তম ধর্ম।|বাম খ্রিস্টধর্ম জ্যামাইকায় চর্চা করা সবচেয়ে বড় ধর্ম। প্রায় ৭০% প্রতিবাদী মতবাদ; ক্যাথলিক মণ্ডলীরা মোট জনসংখ্যার মাত্র ২%। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, দেশের বৃহত্তম প্রোটেস্ট্যান্ট সম্প্রদায় হল চার্চ অফ গড (২৪%), সেভেন্থ-ডে অ্যাডভেন্টিস্ট চার্চ (১১%), পেন্টেকোস্টাল (১০%), ব্যাপটিস্ট (৭%), অ্যাংলিকান (৪%), ইউনাইটেড চার্চ (২%), মেথডিস্ট (২%), মোরাভিয়ান (১%) এবং প্লাইমাউথ ব্রাদারেন (১%)। বেডওয়ার্ডিজম হল দ্বীপের স্থানীয় খ্রিস্টান ধর্মের একটি রূপ, কখনও কখনও একটি পৃথক বিশ্বাস হিসাবে দেখা হয়। ব্রিটিশ খ্রিস্টান বিলুপ্তিবাদী এবং ব্যাপ্টিস্ট মিশনারিরা দাসত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রামে শিক্ষিত প্রাক্তন দাসদের সাথে যোগ দেওয়ার কারণে খ্রিস্টান বিশ্বাস গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। রাস্তাফারি আন্দোলনের ২৯,০২৬ অনুসারী অনুযায়ী ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ২৫,৩২৫ রাস্তাফেরিয়ান পুরুষ এবং ৩,৭০১ রাস্তাফেরিয়ান মহিলা ছিল। ১৯৩০ দশকে জ্যামাইকায় এই বিশ্বাসের উদ্ভব হয়েছিল এবং খ্রিস্টধর্মের মূলে থাকলেও এটি তার কেন্দ্রবিন্দুতে ব্যাপকভাবে আফ্রোকেন্দ্রিক, জ্যামাইকান কৃষ্ণাঙ্গ জাতীয়তাবাদী মার্কাস গার্ভে এবং ইথিওপিয়ার প্রাক্তন সম্রাট হাইল স্যালেসি মতো ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধা করে।Savishinsky, Neil J. "Transnational popular culture and the global spread of the Jamaican Rastafarian movement." NWIG: New West Indian Guide/Nieuwe West-Indische Gids 68.3/4 (1994): 259–281. রাস্তাফারি তখন থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে বড় কৃষ্ণাঙ্গ বা আফ্রিকান অভিবাসী অঞ্চলে।Stephen D. Glazier, Encyclopedia of African and African-American Religions, 2001, p. 263. আফ্রিকা থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় অনুশীলন দ্বীপে চর্চা করা হয়, বিশেষ করে কুমিনা, কনভিন্স, মায়াল এবং ওবেহ।Paul Easterling, "The Ifa' Diaspora: The Art of Syncretism, Part 5 – Obeah and Myal" in (Afrometrics.org, 2017). থাম্ব|জ্যামাইকার একটি ঐতিহাসিক আশুরা উদযাপন, যা স্থানীয়ভাবে হুসায় বা হোসে নামে পরিচিত জ্যামাইকার অন্যান্য ধর্মের মধ্যে রয়েছে জেহোভার সাক্ষী (২% জনসংখ্যা), বাহাই বিশ্বাস, যার সংখ্যা সম্ভবত ৮,০০০ অনুসারী এবং ২১টি স্থানীয় আধ্যাত্মিক সমাবেশ, মরমোনিজম, বৌদ্ধ ধর্ম, এবং হিন্দু ধর্ম। হিন্দু দীপাবলি উত্সবটি ইন্দো-জ্যামাইকান সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতি বছর পালিত হয়।religiousintelligence.co.uk , religiousfreedom.lib.virginia.edu প্রায় ২০০ ইহুদির একটি ছোট জনসংখ্যাও রয়েছে, যারা নিজেদেরকে উদার-রক্ষণশীল হিসাবে বর্ণনা করে। জ্যামাইকার প্রথম ইহুদিরা তাদের শিকড় ১৫ শতকের প্রথম দিকে স্পেন এবং পর্তুগালে খুঁজে পায়। কাহাল কাদোশ শারে শালোম, ইজরায়েলীদের ইউনাইটেড কনগ্রিগেশন নামেও পরিচিত, এটি কিংস্টন শহরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ইহুদি উপাসনালয়। মূলত ১৯১২ সালে নির্মিত, এটি দ্বীপে বাকী সরকারি এবং একমাত্র ইহুদি উপাসনালয়। শারে শালোম হল বিশ্বের কয়েকটি ইহুদি উপাসনালয়গুলির মধ্যে এটি একটি যেখানে বালির আচ্ছাদিত মেঝে রয়েছে এবং এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য৷ অন্যান্য ছোট গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে মুসলিম, যারা ৫,০০০ অনুসারী দাবি করে। আশুরার মুসলিম ছুটির দিন (স্থানীয়ভাবে হুসায় বা হোসে নামে পরিচিত) এবং ঈদ শত শত বছর ধরে দ্বীপ জুড়ে পালিত হয়ে আসছে। অতীতে, প্রতিটি প্যারিশে প্রতিটি বৃক্ষরোপণ হোসে উদযাপন করত। বর্তমানে এটিকে ভারতীয় আনন্দমেলা বলা হয় এবং সম্ভবত এটি ক্লারেন্ডনে সবচেয়ে বেশি পরিচিত যেখানে এটি প্রতি আগস্টে উদযাপন করা হয়। সকল ধর্মের মানুষ পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। সংস্কৃতি সঙ্গীত থাম্ব|191x191পিক্সেল|বব মার্লে, জ্যামাইকার অন্যতম বিখ্যাত রেগে শিল্পী একটি ছোট জাতি হওয়া সত্ত্বেও জ্যামাইকান সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী বিশ্বব্যাপী উপস্থিতি রয়েছে। রেগে, স্কা, মেন্টো, রকস্টেডি, ডাব এবং সাম্প্রতিককালে, ডান্সহল এবং রাগা সবই দ্বীপের প্রাণবন্ত, জনপ্রিয় রেকর্ডিং শিল্পে উদ্ভূত হয়েছে। এগুলি নিজেরাও অনেক অন্যান্য ধারাকে প্রভাবিত করেছে, যেমন পাংক রক (রেগে এবং স্কা মাধ্যমে), ডাব কবিতা, নিউ ওয়েভ, টু-টোন, লাভার্স রক, রেগেটন, জঙ্গল, ড্রাম এবং বেস, ডাবস্টেপ, গ্রাইম এবং আমেরিকান র‍্যাপ সঙ্গীত। বব মার্লে সম্ভবত সবচেয়ে পরিচিত জ্যামাইকান সঙ্গীতশিল্পী; ১৯৬০-৭০ এর দশকে তার ব্যান্ড দ্য ওয়েইলারের সাথে তার অনেক হিট গান ছিল, রেগে আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং লক্ষ লক্ষ রেকর্ড বিক্রি করে। টুটস হিবার্ট, মিলি স্মল, বার্নিং স্পিয়ার, অল্টন এলিস, লি "স্ক্র্যাচ" পেরি, গ্রেগরি আইজ্যাকস, হাফ পিন্ট, প্রোটোজে, পিটার তোশ, বানি ওয়েলার, বিগ ইয়ুথ, জিমি ক্লিফ, ডেনিস ব্রাউন, ডেসমন্ড ডেকার, বেরেস হ্যামন্ড, বেনি ম্যান, শ্যাগি, গ্রেস জোন্স, শাব্বা র‍্যাঙ্কস, সুপার ক্যাট, বুজু ব্যান্টন, সন পল, আই ওয়েইন, বাউন্টি কিলার সহ আরও অনেক আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত শিল্পী জ্যামাইকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সাহিত্য সাংবাদিক এবং লেখক এইচ.জি. ডি লিসার (১৮৭৮-১৯৪৪) তার অনেক উপন্যাসের জন্য তার জন্মভূমিকে ব্যবহার করেছেন। জ্যামাইকার ফালমাউথে জন্মগ্রহণকারী, ডি লিসার অল্প বয়সে জ্যামাইকা টাইমসের একজন প্রতিবেদক হিসাবে কাজ করেছিলেন এবং ১৯২০ সালে প্ল্যান্টার্স পাঞ্চ পত্রিকা প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন। দ্য হোয়াইট উইচ অফ রোজহল তার অন্যতম বিখ্যাত উপন্যাস। তিনি জ্যামাইকান প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের অনারারি প্রেসিডেন্ট মনোনীত হন; তিনি জ্যামাইকান চিনি শিল্পের প্রচারের জন্য তার পেশাদার কর্মজীবন জুড়ে কাজ করেছেন। রজার মাইস (১৯০৫–১৯৫৫), একজন সাংবাদিক, কবি এবং নাট্যকার অনেক ছোট গল্প, নাটক এবং উপন্যাস লিখেছেন, যার মধ্যে রয়েছে দ্য হিলস ওয়্যার জয়ফুল টুগেদার(১৯৫৩), ব্রাদার ম্যান(১৯৫৪) এবং ব্ল্যাক লাইটনিং (১৯৫৫)। ইয়ান ফ্লেমিং (১৯০৮-১৯৬৪), যার জ্যামাইকায় একটি বাড়ি ছিল যেখানে তিনি যথেষ্ট সময় কাটিয়েছেন, বারবার দ্বীপটিকে তার জেমস বন্ড উপন্যাসে একটি স্থাপনা হিসাবে ব্যবহার করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে লাইভ অ্যান্ড লেট ডাই, ডক্টর নো, "ফর ইয়োর আইজ অনলি", দ্য ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন গান এবং অক্টোপসি এবং দি লিভিং ডেলাইটস। এছাড়াও, জেমস বন্ড ক্যাসিনো রয়্যালে জ্যামাইকা-ভিত্তিক কভার ব্যবহার করে। এখন পর্যন্ত, শুধুমাত্র জেমস বন্ড ফিল্ম অ্যাডাপ্টেশন যা জ্যামাইকাতে সেট করা হয়েছে তা হল ডক্টর নো। কাল্পনিক দ্বীপ সান মনিকের জন্য লাইভ অ্যান্ড লেট ডাই-এর চিত্রগ্রহণ জ্যামাইকায় হয়েছে। মারলন জেমস (১৯৭০), ঔপন্যাসিক তিনটি উপন্যাস প্রকাশ করেছেন: জন ক্রো'স ডেভিল (২০০৫), দ্য বুক অফ নাইট উইমেন (২০০৯) এবং এ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ সেভেন কিলিংস (২০১৪)। তিনি ২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার বিজয়ী হয়েছিলেন। চলচ্চিত্র ১৯৬০ এর দশকের গোড়ার দিকে জ্যামাইকার চলচ্চিত্রের একটি বিচিত্র ইতিহাস রয়েছে। জ্যামাইকার অপরাধী যুবকদের একটি দৃষ্টিতে ১৯৭০-এর দশকের মিউজিক্যাল ক্রাইম ফিল্ম দ্য হার্ডার দে কাম-এ উপস্থাপিত হয়েছে, যেখানে জিমি ক্লিফ একজন হতাশ (এবং সাইকোপ্যাথিক) রেগে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে অভিনয় করা হয়েছে যে একটি খুনের অপরাধী। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য জ্যামাইকান চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে রয়েছে কান্ট্রিম্যান , রকার্স, ড্যান্সহল কুইন, ওয়ান লাভ, শোটাস, আউট দ্য গেট, থার্ড ওয়ার্ল্ড কপ এবং কিংসটন প্যারাডাইস। জ্যামাইকাও প্রায়শই চিত্রগ্রহণের স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হয়, যেমন জেমস বন্ড চলচ্চিত্র ড. নো(১৯৬২), প্যাপিলন (১৯৭৩) অভিনীত স্টিভ ম্যাককুইন, ককটেল (১৯৮৮) অভিনীত টম ক্রুজ, এবং ১৯৯৩ সালের ডিজনি কমেডি কুল রানিংস, যা শীতকালীন অলিম্পিকে জ্যামাইকার প্রথম ববস্লেড দল তৈরি করার চেষ্টা করার ঐতিহাসিক গল্পের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। রন্ধনপ্রণালী থাম্ব|চাউল ও মটর দিয়ে জ্যামাইকার ছাগলের গোশতের তরকারি জ্যামাইকা দ্বীপটি তার জ্যামাইকান জার্ক মশলা, তরকারি এবং চাল ও মটরের জন্য বিখ্যাত, যা জ্যামাইকান খাবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। জ্যামাইকা রেড স্ট্রাইপ বিয়ার এবং জ্যামাইকান ব্লু মাউন্টেন কফির জন্মস্থান। জাতীয় প্রতীক (জ্যামাইকা তথ্য পরিষেবা থেকে) জাতীয় পাখি: লাল-বিলযুক্ত স্ট্রিমারটেল (ডাক্তার পাখিও বলা হয়) (একটি হামিংবার্ড, ট্রচিলাস পলিটমাস) জাতীয় ফুল - লিগ্নাম ভিটা (গুয়াকাম অফিসিসনাল) জাতীয় গাছ: নীল মহো (হিবিস্কাস ট্যালিপারটি ইলাটাম) জাতীয় ফল: আক্কি (ব্লিঘিয়া সাপিদা) জাতীয় নীতিবাক্য: "অনেকের মধ্যে, এক জন।" ক্রীড়া শিক্ষা আরও দেখুন জ্যামাইকার ইতিহাস জ্যামাইকা, ল্যান্ড উই লাভ রাস্তাফারি তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারী বিবরণ জামাইকা সরকার রাজ-পরিবারের ওয়েবসাইটে জ্যামাইকা জ্যামাইকা তথ্য সেবার সরকারী ওয়েবসাইট সাধারণ তথ্য জ্যামাইকা দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি জ্যামাইকা - UCB Libraries GovPubs থেকে কার্লিতে জ্যামাইকা বিবিসি নিউজ থেকে জ্যামাইকা জামাইকা জাতীয় গ্রন্থাগার থেকে ক্যারিবীয় ডিজিটাল লাইব্রেরিতে উপকরণ জ্যামাইকা ভার্চুয়াল ট্যুর এইচডি - দ্বীপের চারপাশে অনেকগুলি অবস্থান প্রদর্শন বিষয়শ্রেণী:উত্তর আমেরিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:জ্যামাইকা বিষয়শ্রেণী:ক্যারিবীয় দ্বীপ বিষয়শ্রেণী:জি১৫ রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:দ্বীপ রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:ক্যারিবীয় রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:প্রাক্তন ব্রিটিশ উপনিবেশ বিষয়শ্রেণী:ছোট দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৬২-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:ক্যারিবীয় সম্প্রদায়ের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:বৃহত্তর আন্তিলীয় দ্বীপপুঞ্জ বিষয়শ্রেণী:প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
জাপান
https://bn.wikipedia.org/wiki/জাপান
থমাস জেফারসন
https://bn.wikipedia.org/wiki/থমাস_জেফারসন
REDIRECT টমাস জেফারসন
জেলিফিশ
https://bn.wikipedia.org/wiki/জেলিফিশ
300px|right|thumb|জেলিফিশ জেলিফিশ এক ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণী যাদের পৃথিবীর সব মহাসাগরে দেখতে পাওয়া যায়। নামে "ফিশ" হলেও এটি মাছ নয়; এর মেরুদণ্ড নেই। ঘণ্টাকৃতি জেলীসদৃশ প্রাণীটি প্রাণীজগতের নিডারিয়া পর্বের সিফোজোয়া শ্রেণীর অন্তর্গত। জেলিটিন সমৃদ্ধ ছাতার মত অংশ এবং ঝুলে পড়া কর্ষিকা - এ দুই অংশে প্রাণীটির দেহ গঠিত। অন্তত ৫০ কোটি বছর ধরে সাগরে এদের বাস।Public Library of Science. "Fossil Record Reveals Elusive Jellyfish More Than 500 Million Years Old." ScienceDaily, 2 Nov. 2007. Web. 16 Apr. 2011 প্রজনন অযৌন এবং যৌন উভয় পদ্ধতিতেই এরা বংশবিস্তার করে থাকে। এদের অযৌন জনন প্রক্রিয়া দুই প্রকারে সম্পন্ন হতে পারে। যথাঃ ১। পুনরুৎপত্তি (Regeneration) ২। মুকুলোদগম (Buddin) জীবনকাল জেলিফিশের জীবনকাল কয়েক ঘণ্টা (ছোট আকারের কিছু হাইড্রোমিউডিসি (hydromedusae) থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত হতে পারে। প্রজাতিভেদে জীবনকাল ও দোহবয়ব ভিন্ন হতে পারে। বাসস্থান বেশিরভাগ জেলিফিশ সামুদ্রিক জীব হলেও স্বাদুপানিতেও কিছু (যেমন ;হাইড্রোমিউডিসি (hydromedusae)) দেখা যায়। কিছু জেলিফিশ আবার শুধু লেকেই বাস করে। যেমন পালাউ (Palau) এর জেলিফিশ হৃদে এমনটি দেখা যায়। দৈহিক গঠন জেলিফিশের দেহের মধ্যে একটি মাত্র নালী, সিলেনটেরন বা গ্যাস্ট্রোভাসকুলার গহ্বর থাকে, যা একটিমাত্র মুখছিদ্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে উন্মুক্ত হয়। মুখছিদ্র পায়ুছিদ্রের কাজ করে। মুখছিদ্রকে ঘিরে ফাঁপা কর্ষিকা থাকে। কর্ষিকায় নির্ভোক্লাস্ট কোষ (নিমাটোসিস্ট) থাকে যা জেলিফিশকে শিকার ধরা ও আত্মরক্ষার কাজে সাহায্য করে থাকে। জেলিফিশ বহুকোষী প্রাণী। এর অনেক প্রজাতি আছে। কোনও প্রজাতির জেলিফিশের আকৃতি ওলটানো বাটির মতো, আবার কারো গঠন ঘণ্টার মতো। শরীরের কিনারা খাঁজকাটা। খাঁজকাটা অংশ থেকে বের হয়ে আসে সরু-সরু কর্ষিকা। কর্ষিকাকে বলা হয় 'টেনট্যাকল'। জেলিফিশের মুখ চারকোণা বা চতুষ্কোণ। চারকোণে থাকে চারটি বাহু। যে সমস্ত জেলিফিশের আকৃতি মাঝারি ধরনের তাদের শরীর স্বচ্ছ। এই ধরনের জেলিফিশের নাম 'আরেলিয়া'। খুব সুন্দর দেখতে লাগে এই প্রজাতির জেলিফিশদের। একটি বৃত্ত বা বোঁটার উপর এদের মুখ বসানো থাকে। মুখমণ্ডলের পরেই অবস্থান পাকস্থলীর। পাকস্থলীর নাম— 'গ্যাষ্ট্রিক পাউচ'। গা থেকে বের হয়েছে একটি নালিকাতন্ত্র, যাকে বলা হয় ক্যানাল সিস্টেম। নালিকাগুলি শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায়। এদের শিকার ধরার কৌশল একটু অন্য ধরনের। শিকার ধরার জন্য এদের নানা ফন্দি আছে। জলের ওপর ভেসে থাকার জন্য বেলুনের মতো গোলাকার দেহ, পাতলা স্বচ্ছ আঠামত পদার্থ বের করে থাকে। এমনভাবে থাকে, যাতে মনে হয়, মাছ ধরার জাল ছড়ানো আছে। শিকড়ের মতন লম্বা বাহুকে প্রসারিত করে। কোনও কোনও জেলিফিশের জাল ৩০ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত ঝুলে থাকে। মাঝারি আকারের জাল ১০ থেকে ১১ ফুট হয়। মেরুসাগর অঞ্চলের জায়ান্ট জেলিফিশ ৮ ফুট চওড়া হয় এবং তাদের জাল জলের নিচে নেমে যায় ১০০ ফুট পর্যন্ত। শিকড়ের মতো কর্ষিকায় আছে সুঁচের মতো মিহি বিষাক্ত কাটা। এই বিষাক্ত কাটার আঘাতে মাছ অবশ হয়ে পড়ে। এরপর জেলিফিশ সেই মাছ খায়। মানুষের গায়ে এই বিষাক্ত কাঁটা লাগলে ফোস্কা পড়ে যায়। এবং অসম্ভব জ্বালা করে। প্রকারভেদ বাক্স জেলিফিশ একে অনেক সময় সামুদ্রিক ভীমরুল বলেও আখ্যায়িত করা হয়। এছাড়াও একে মৃত্যুর বাক্সও বলা হয় (box of death)। এর আছে লম্বা কর্ষিকা যা নেমাটোসিস্ট ও বিষ বহন করে। এর হুলের আঘাত প্রাণঘাতী হতে পারে এবং মাত্র চার মিনিটেই শিকারকে মেরেও ফেলতে পারে অর্থ্যাৎ সাপের বিষকেও হার মানিয়ে দেয়। এগুলোর বিষ-রোধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। বাস উত্তর অষ্ট্রেলিয়ায়। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:নিডেরিয়া বিষয়শ্রেণী:অমেরুদণ্ডী প্রাণী
যিশু
https://bn.wikipedia.org/wiki/যিশু
যীশু (, Iēsoûs; , Yēšū́aʿ; , Yešūʿ; ; Yasūʿ বা ʿĪsā; ৪ খ্রি.পূ. – ৩০ বা ৩৩ খ্রি.), যিনি নাসরতীয় যীশু বা যীশু খ্রীষ্ট নামেও পরিচিত, ছিলেন প্রথম শতাব্দীর একজন যিহূদী ধর্মপ্রচারক ও ধর্মীয় নেতা। তিনি বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম খ্রীষ্টধর্মের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব। অধিকাংশ খ্রীষ্টানদের বিশ্বাসমতে তিনি হলেন পুত্র ঈশ্বরের অবতার বা মাংসে মূর্তিমান বাক্য এবং পুরাতন নিয়মে ভাবোক্ত প্রতীক্ষিত মশীহ বা খ্রীষ্ট। প্রকৃতপক্ষে প্রাচীনকালের সমস্ত আধুনিক পণ্ডিতেরা একমত যে, যীশু ঐতিহাসিকভাবে বিদ্যমান ছিলেন, যদিও ঐতিহাসিক যীশুর খোঁজ সুসমাচারগুলোর ঐতিহাসিক নির্ভরযোগ্যতা এবং বাইবেলের নতুন নিয়মে যীশু কতটা নিবিড়ভাবে চিত্রিত হয়েছেন তা নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, কেননা যীশুর জীবনের নথিপত্র কেবল সুসমাচারগুলোতেই রয়েছে। যীশু ছিলেন একজন গালীলীয় যিহূদী, যিনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন কর্তৃক বাপ্তিস্মিত হয়েছিলেন এবং পরিচর্যা ও প্রচারণা শুরু করেছিলেন। তার শিক্ষা প্রাথমিকভাবে মৌখিক প্রেষণ দ্বারা সংরক্ষিত ছিল এবং তিনি নিজে প্রায়ই “রব্বি” নামে অবিহিত ছিলেন। যীশু কীভাবে ঈশ্বরকে সর্বোত্তমভাবে অনুসরণ করা যায় তা নিয়ে যিহূদীদের সঙ্গে বিতর্ক করেছিলেন, নিরাময়ে নিযুক্ত হয়েছিলেন, দৃষ্টান্তের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করেছিলেন এবং অনুসারীদের জড়ো করেছিলেন। ঐতিহ্য অনুসারে যিহূদী কর্তৃপক্ষ তাঁকে গ্রেফতার ও বিচার করেছিল, রোমান সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছিল এবং রোমীয় দেশাধ্যক্ষ পন্তীয় পীলাতের নির্দেশে ক্রুশারোপণ করেছিল। তার মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা বিশ্বাস করেছিল যে, তিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন এবং তারা যে সম্প্রদায়টি গঠন করেছিল তা অবশেষে আদি মণ্ডলীতে পরিণত হয়েছিল। জীবনী প্রাচীন ইতিহাসের সকল আধুনিক গবেষকই কার্যত স্বীকার করেছেন যে, যীশু এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব। যদিও ঐতিহাসিক যিশুর অনুসন্ধান করে সুসমাচারগুলোর ঐতিহাসিক বিশ্বাসযোগ্যতা এবং বাইবেলে চিত্রিত যিশুর সঙ্গে ঐতিহাসিক যিশুর কতটা মিল, সেই বিষয়ে খুব কম ক্ষেত্রেই মতৈক্যে উপনীত হওয়া গিয়েছে। যীশু ছিলেন একজন গালীলীয় ইহুদি। বাপ্তিস্মদাতা যোহন কর্তৃক দীক্ষিত হবার পর তিনি পরিচর্যা ও প্রচারণা শুরু করেন। তিনি মৌখিকভাবে প্রচারকার্য করতেন। প্রেরিতগণ প্রায়শই তাঁকে “রব্বি” বলে সম্মোধন করতেন। ঈশ্বরকে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে কোন উপায়টি শ্রেষ্ঠ তা নিয়ে তিনি সঙ্গী ইহুদিদের সঙ্গে বিতর্কে অবতীর্ণ হন, রোগগ্রস্থদের আরোগ্যদান করেন, রূপক কাহিনীর মাধ্যমে শিক্ষাদান করেন এবং অনুগামীদের একত্র করেন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং ইহুদি কর্তৃপক্ষ তার বিচার করে। তারপর তাঁকে রোমান সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং রোমান গভর্নর পন্তীয় পীলাতের আদেশে তাঁকে ক্রুশারোপণ করা হয়। তার অনুগামীরা বিশ্বাস করতেন, মৃত্যুর পর তিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন এবং তারা যে সমাজ গড়ে তুলেছিলেন সেটাই কালক্রমে আদি মণ্ডলীর রূপ নেয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ খ্রিষ্ট ধর্ম খ্রীষ্টীয় মতবাদের অন্তর্ভুক্ত বক্তব্যগুলি হল পবিত্র আত্মার প্রভাবে গর্ভধারণ করে মরিয়ম নাম্নী কুমারীর গর্ভে যীশুর জন্ম হয়, তিনি বিভিন্ন অলৌকিক কার্য সাধন করেন, খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী প্রতিষ্ঠা করেন, মানবের পাপস্খালনের জন্য ক্রুশারোপিত হয়ে রোপণ আত্মবলিদান দিয়ে মৃত্যুবরণ করেন, মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত হন, স্বর্গারোহণ করেন এবং সেখান থেকে তিনি পুনরাগমন করবেন। অধিকাংশ খ্রীষ্টান বিশ্বাস করে যে, যীশু ঈশ্বরের সঙ্গে তাঁদের পুনর্মিলন ঘটাবেন। নাইসিন ক্রিড অনুযায়ী, শারীরিক পুনরুত্থানের পূর্বে বা পরে যীশু জীবিত ও মৃতদের বিচার করবেন। খ্রীষ্টীয় পরলোকতত্ত্বে এই ঘটনাটি যীশুর দ্বিতীয় আগমনের সঙ্গে যুক্ত। খ্রীষ্টানদের একটি বড় অংশ যিশুকে ত্রিত্বের তিন ব্যক্তিত্বের দ্বিতীয় পুত্র ঈশ্বর বলে বিশ্বাস করে। তবে অল্পসংখ্যক খ্রীষ্টান শাখাসম্প্রদায় সম্পূর্ণত বা অংশত অশাস্ত্রীয় বিধায় ত্রিত্ববাদকে অস্বীকার করে। প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর তারিখে (প্রাচ্যদেশীয় কয়েকটি খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীতে জানুয়ারি মাসের ভিন্ন ভিন্ন তারিখে) বড়দিন উৎসবের মধ্য দিয়ে যীশুর জন্ম উদ্‌যাপিত হয়। তার ক্রুশারোহণের সম্মানে গুড ফ্রাইডে ও পুনরুত্থানের সম্মানে ইস্টার পালিত হয়। বহুল ব্যবহৃত পঞ্জিকা বর্ষ "খ্রিস্টাব্দ" যীশুর যথাযথপ্রায় জন্মসনের ভিত্তিতে প্রচলিত হয়েছে। ইংরেজিতে এই বর্ষের সংক্ষিপ্ত নামরূপ "এডি" কথাটি এসেছে লাতিন আন্নো দোমিনি (anno Domini, "প্রভুর সন") কথাটি থেকে। ইংরেজিতে অধুনা এই বর্ষের ভিত্তিতে "সাধারণ বর্ষ" ("সিই") ধরা হয়। ইসলাম ধর্ম খ্রিস্টধর্মের বাইরেও যিশু সম্মানিত হন। ইসলামে যিশুকে (সাধারণত ঈসা নামে উল্লিখিত) ঈশ্বরের গুরুত্বপূর্ণ নবিদের অন্যতম ও মসিহ মনে করা হয়। মুসলমানেরা বিশ্বাস করেন যে, যিশু কুমারীগর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আল কুরআন এ তার সাহায্যকারীদের হাওয়ারি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে । কিন্তু তারা তাঁকে ঈশ্বর বা ঈশ্বরপুত্র বলে মানেন না। কুরআনে বলা হয়েছে যে, যিশু নিজের দৈবসত্ত্বা দাবি করতেন না। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন না যে, তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল। তাঁদের মতে, ঈশ্বর তাঁকে স্ব শরীরে আসমানে তুলে নেন। এবং কিয়ামতের( বিশ্ব জগৎ ধংশ্বের) পূর্বে পুনরায় আসবেন মাসীহুদ দাজ্জাল (ভন্ড মাসীহকে) কে হত্যা করার জন্য । অন্যদিকে ইহুদিধর্ম যিশুকে প্রতীক্ষিত ত্রাণকর্তা বলে স্বীকার করে না। এই মতে, তিনি ত্রাণকর্তা-সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর শর্তগুলি পূরণ করেন না; তার দৈবসত্ত্বা ছিল না এবং তিনি পুনরুত্থিতও হননি। আরও দেখুন ঈসা মাসীহ (ইরানি চলচ্চিত্র) পাদটীকা ব্যাখ্যা তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জি বহিঃসংযোগ Complete Sayings of Jesus Christ in parallel Latin and English. বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টধর্ম বিষয়শ্রেণী:ইসলামের নবি বিষয়শ্রেণী:রোমান সাম্রাজ্য ইহুদি বিষয়শ্রেণী:দেবত্বারোপিত ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:ধর্ম প্রবর্তক বিষয়শ্রেণী:মশীহবাদ বিষয়শ্রেণী:অলৌকিক ক্ষমতাধর বিষয়শ্রেণী:৩০-এর দশকে মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:কাঠমিস্ত্রি বিষয়শ্রেণী:স্রষ্টা দেবতা বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টধর্মে ঈশ্বর বিষয়শ্রেণী:যিশু বিষয়শ্রেণী:ইহুদি মশীহ দাবিকারী বিষয়শ্রেণী:যিহূদীয় ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:ঈশ্বরের নাম বিষয়শ্রেণী:ক্রুশবিদ্ধ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:রোমান সাম্রাজ্য কর্তৃক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:বেথলেহেমের ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:ত্রাণকর্তা দেবতা বিষয়শ্রেণী:গৃহহীন ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:খুনের শিকার পুরুষ
জোন অব আর্ক
https://bn.wikipedia.org/wiki/জোন_অব_আর্ক
জোন অফ আর্ক (জানুয়ারি ৬, ১৪১২ – মে ৩০, ১৪৩১) পরাধীন ফ্রান্সের মুক্তিদাত্রী বীরকন্যা এবং রূপকথাতুল্য এক নেত্রী। জান্ দার্ক(Jeanne ď Arc), যিনি ইংরেজিতে Joan Of Arc নামে পরিচিত। ইংরেজদের সঙ্গে শতবর্ষ ব্যাপী যুদ্ধের (১৩৩৭-১৪৫৩) সময় তিনি ফ্রান্সের সৈন্যবাহিনীকে নেতৃত্ব দেন। তার স্মরণে ফ্রান্সে অনেক স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে।তার বন্ধু ছিলেন অর্ক গাইন। ১৪৩১ খ্রিস্টাব্দের ৩০ মে জোন অফ আর্ক কে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। জন্ম মিউজ নদীর তীরে দঁরেমি গ্রামের এক সাধারণ কৃষক পরিবারে ১৪১২ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ফ্রান্স তখন ইংরেজদের শাসনাধীন ছিল। ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম হেনরির(১৩৮৭-১৪২২) পুত্র ষষ্ঠ হেনরি(১৪২১-১৪৭১) ফ্রান্সের সিংহাসনে আরোহণ করলে ফ্রান্সের রাজা সপ্তম চার্লস পালিয়ে যান। দৈববাণী শোনা এবং রাজার সাথে সাক্ষাৎ জোন লেখাপড়া জানতেন না। কথিত আছে, মাত্র তের বছর বয়সে মাঠে ভেড়ার পাল চরাবার সময় তিনি দৈববাণী শুনতে পান যে তাকে মাতৃভূমির স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার ও ফ্রান্সের প্রকৃত রাজাকে ক্ষমতায় পূনর্বহাল করার জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। এই দৈববানী তার জীবনকে আমূল পালটে দেয়। এর পর জোন অনেক চেষ্টা করে ফ্রান্সের পলাতক রাজা সপ্তম চার্লসের সঙ্গে দেখা করেন এবং দেশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য তার কাছে সৈন্য প্রার্থনা করেন। রাজা প্রথমে অবজ্ঞা প্রদর্শন করলেও যাজক সম্প্রদায়ের পরামর্শে জোনকে সৈন্যসাহায্য দিতে সম্মত হন। জোনের অভিযান জোন সাদা পোশাক পরিধান করে একটি সাদা ঘোড়ায় চড়ে পঞ্চক্রুশধারী তরবারি হাতে ৪০০০ সৈন্য নিয়ে ১৪২৯ সালের ২৮শে এপ্রিল অবরুদ্ধ নগরী অরলেয়াঁয় প্রবেশ করেন। প্রথম আক্রমণেই তারা জয়লাভ করেন এবং এরপর তাদের একের পর এক সাফল্য আসতে থাকে। কিছুদিনের মধ্যেই তারা ইংরেজ সৈন্যদের কবল থেকে তুরেলবুরুজ শহর উদ্ধার করেন। এর পর পাতে'র যুদ্ধেও ইংরেজরা পরাজিত হয়। জুন মাসে জোন তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে শত্রুদের ব্যূহ ভেদ করে রীইঁ(Reims) নগরী অধিকার করেন। এরপর ১৬ই জুলাই সপ্তম চার্লস ফ্রান্সের রাজা হিসেবে আবার সিংহাসনে অভিষিক্ত হন এবং এভাবে জোন ফ্রান্সকে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে দেন। জোনের মাধ্যমে ফ্রান্স ইংল্যান্ডের মধ্যকার শতবর্ষ ব্যাপী যুদ্ধ অবসান ঘটে। জোনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হত্যা ফ্রান্সের স্বাধীনতার পর ইংরেজরা জোনকে জব্দ করার ফন্দি আঁটতে থাকে। কঁপিঞ্যান্(Compiègne) শহরের বহির্ভাগে শত্রুসৈন্যদের ওপর আক্রমণকালে ফ্রান্সের রাজনৈতিক দল বার্গেন্ডি-কর্মীদের বিশ্বাসঘাতকতার সুযোগ নিয়ে ইংরেজরা জোনকে আটক করতে সক্ষম হয়। তারপর এক ইংরেজ পাদ্রির অধীনে তার বিচারকাজ চলে। বিচারে তার কার্যকলাপকে প্রচলিত ধর্মমতের বিরোধী আখ্যা দিয়ে তাকে 'ডাইনি' সাব্যস্ত করা হয়। আইনে এর শাস্তির বিধান ছিল জীবন্ত পুড়িয়ে মারা। এই রায় অনুসারে জোনকেও তাই ১৪৩১ খ্রিষ্টাব্দে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। তার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর ফরাসিরা চিরতরে ফ্রান্সে ইংরেজদের সকল অধিকার ও চিহ্ন মুছে দেয়ার প্রয়াস পায়। পৃথিবীর ইতিহাসে জোন অফ আর্ক এক প্রেরণার নাম। বিষয়শ্রেণী:ফ্রান্সের ইতিহাস বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টধর্ম বিষয়শ্রেণী:ফ্রান্সের জাতীয় প্রতীক বিষয়শ্রেণী:১৪১০-এর দশকে জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৪৩১-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:অ্যাঙ্গলিকান সাধু বিষয়শ্রেণী:যুদ্ধকালীন নারী ক্রসড্রেসার বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টধর্মের নবি
জর্ডান
https://bn.wikipedia.org/wiki/জর্ডান
থাম্ব|269x269পিক্সেল|উত্তর জর্ডানের আজলাউনের একটি বন জর্ডান (বিকল্প বানান: জর্দান, যর্ডান, যর্দান) () বা হাশেমীয় জর্ডান রাজ্য (المملكة الأردنية الهاشمية আল্‌মাম্‌লাকাল্‌'উর্দুনিয়াল্‌ হাশিমিয়া) মধাপ্রাচ্যের একটি রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। জর্দানের রাজবংশ নিজেদেরকে মুহাম্মাদের পিতামহ হাশেমের বংশধর বলে মনে করে। জর্দানের ভূপ্রকৃতি ঊষর মরুভূমিময়। এখানে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণও কম। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে দেশটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে দেশটি উসমানীয় সাম্রাজ্য এর অংশ ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধতে উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে ব্রিটিশরা অঞ্চলটি দখলে নেয়। জর্দান নদীর পূর্বতীরের ট্রান্সজর্ডান এবং পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিন উভয়ই ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৯৪৬ সালে ট্রান্সজর্ডান অংশটি একটি স্বাধীন রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৪৯ সালে এর নাম বদলে শুধু জর্দান (জর্ডান) রাখা হয়। ইতিহাস ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের অংশবিশেষে ইসরায়েল স্বাধীনতা ঘোষণা করলে জর্দান আরও চারটি আরব রাষ্ট্রের সাথে একত্রে ইসরায়েলিদের আক্রমণ করে। যুদ্ধশেষে ইসরায়েলিরা পশ্চিম জেরুসালেম এবং জর্দানিরা পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেম দখলে আনে। ১৯৬৭ সালের জুন মাসে ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ব জেরুসালেম ও পশ্চিম তীরও দখল করে নেয়। জর্দান পশ্চিম তীরকে জর্দানের অংশ হিসেবে দাবী করতে থাকলেও স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৮৮ সালে জর্দানের বাদশাহ হুসেন পশ্চিম তীরের উপর থেকে জর্দানে দাবি প্রত্যাহার করে নেন। ১৯৪৬ সালের ২২ শে মার্চ ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক স্বাক্ষরিত লন্ডনের চুক্তি এবং ট্রান্সজর্ডানের আমির উভয় দেশের সংসদ দ্বারা অনুমোদনের পর ট্রান্সজর্ডানের স্বাধীনতা স্বীকৃত। ১৯৪৬ সালের ২৫ শে মে ট্রান্সজর্ডান পার্লামেন্টে চুক্তিটি অনুমোদন করার পর ট্রান্সজর্ডান ট্রান্সজর্ডানের হাশেমাইট কিংডমের নামে একটি রাজ্যের পদে উন্নীত হন এবং আবদুল্লাহর প্রথম রাজা হিসেবে । ১৯৪২ সালের ২৬ শে এপ্রিল জর্ডানের হাশেমাইট রাজ্যের নামটি সংক্ষিপ্ত করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর ১৯৫৫ এ জর্দান জাতিসংঘের সদস্য হয়ে ওঠে। ১৯৪৮ সালের ১৫ মে আরব-ইজরায়েল যুদ্ধের অংশ হিসাবে, জর্ডান অন্যান্য আরব রাজ্যের সাথে ফিলিস্তিন আক্রমণ করে। যুদ্ধের পর, জর্দান ওয়েস্ট ব্যাংককে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ২৪ এপ্রিল ১৯৫০ জর্দান জেরিকো সম্মেলনের পরে জর্ডান আনুষ্ঠানিকভাবে এই অঞ্চলগুলি সংযুক্ত করে। জবাবে, কিছু আরব দেশ আরব লীগের কাছ থেকে জর্ডানকে বহিষ্কারের দাবি জানায়। ১২ জুন, ১৯২২ তারিখে আরব লীগ ঘোষণা করে যে সংযুক্তিটি একটি অস্থায়ী, ব্যবহারিক পরিমাপ এবং জর্ডান ভবিষ্যতে বসতি স্থাপনের জন্য একটি "ট্রাস্টি" হিসাবে অঞ্চলটি ধরে রেখেছিল। ১৯৫১ সালে ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের দ্বারা আল-আকসা মসজিদে রাজা আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছিল, যার মধ্যে তিনি ইজরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার গুজব করেছিলেন। আব্দুল্লাহ তার পুত্র তালালের দ্বারা উত্তরাধিকারী হন, যিনি শীঘ্রই তার বড় ছেলে হোসেনের পক্ষে অসুস্থতার কারণে পদত্যাগ করেন। ১৯৫২ সালে তালাল দেশের আধুনিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭ বছর বয়সে হুসেন সিংহাসনে আরোহণ করেন ১৯৫৩ সালে। নিম্নলিখিত সময়ের মধ্যে জর্দান মহান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখেছে। ১৯৫০-এর দশকে রাজনৈতিক উত্থান ছিল, যেমন নাসেরিজম এবং প্যান-আরবিজম আরব বিশ্বকে সরিয়ে নিয়েছিল। ১৯৫৬ সালের ১ মার্চ, রাজা হোসেন সেনাবাহিনীকে কয়েকজন সিনিয়র ব্রিটিশ অফিসারকে বরখাস্ত করে সেনাবাহিনীর কমান্ডকে আরব দেশে পরিণত করেন, যা দেশে বিদেশি প্রভাব ফেলার জন্য তৈরি করা একটি আইন। ১৯৫৮ সালে, জেরার্ড এবং প্রতিবেশী হাশেমাইট ইরাক, নাসেরের মিশর ও সিরিয়ার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী সংযুক্ত আরব প্রজাতন্ত্র গঠনের প্রতিক্রিয়া হিসাবে আরব ফেডারেশন গঠন করে। ইউনিয়নটি মাত্র ছয় মাস স্থায়ী হয়, ইরাকি রাজা ফয়সাল দ্বিতীয় (হুসেনের চাচাতো ভাই) ১৪ জুলাই ১৯৫৮ তারিখে রক্তাক্ত সামরিক অভ্যুত্থানের পর পদত্যাগ করে। জর্ডান ১৯৬৭সালের জুন মাসে ছয় দিনের যুদ্ধ শুরু করার জন্য ইজরায়েলকে মিসরে একটি পূর্ব নির্ধারিত ধর্মঘট শুরু করার আগে মিশরের সাথে সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে জর্দান ও সিরিয়া যুদ্ধে যোগ দেয়। আরব রাষ্ট্র পরাজিত হয় এবং জর্ডান ইজরায়েলের কাছে ওয়েস্ট ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, যার মধ্যে ১৯৬৮ সালে কারমির যুদ্ধ ছিল, যেখানে জর্দানীয় সশস্ত্র বাহিনী এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) এর যৌথ বাহিনী পশ্চিতীরের সঙ্গে জর্দান সীমান্তে কারম্মি ক্যাম্পে একটি ইসরায়েলি হামলা চালায়। প্যালেস্টাইনের ইজরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে সীমিত অংশগ্রহণের সত্ত্বেও, কারমির ঘটনাগুলি আরব বিশ্বের ব্যাপক স্বীকৃতি ও প্রশংসা অর্জন করে। ফলস্বরূপ, যুদ্ধের পরের সময়ের মধ্যে অন্য আরব দেশ থেকে জর্ডানের অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনের আধা সামরিক বাহিনীর (ফেডায়িন) সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফেডারেশন কার্যক্রম শীঘ্রই জর্দান শাসন আইনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেপ্টেম্বর ১৯৭০ সালে, জর্ডান সেনাবাহিনী ফেদেরাইকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল এবং ফলস্বরূপ যুদ্ধের ফলে বিভিন্ন পিএলও গ্রুপের ফিলিস্তিন যোদ্ধাদের লেবাননে পাঠানো হয়েছিল, যা একটি কালো সংঘাতের নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। ১৯৭৩ সালে মিশর ও সিরিয়া ইসরাইলের উপর ইয়েম কপপুরে যুদ্ধ চালায় এবং ১৯৬৭ সালের জর্দান নদী যুদ্ধবিরতি লাইনের সাথে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জর্ডান সিরিয়ায় ইসরায়েলি একক আক্রমণের জন্য সিরিয়ার একটি ব্রিগেড পাঠিয়েছিল কিন্তু জর্ডান অঞ্চলের ইজরায়েলি বাহিনীকে যুক্ত করে নি। ১৯৭৪ সালে র্যাবত সম্মেলন সম্মেলনে, আরব লীগের বাকি অংশের সাথে জর্দান একমত হয়েছিলেন যে, পিএলও ফিলিস্তিনি জনগণের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি। তারপরে, জর্ডান ১৯৮৮ সালে ওয়েস্ট ব্যাংককে তার দাবি ত্যাগ করে। ১৯৯১ মাদ্রিদ সম্মেলনে, জর্ডান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পৃষ্ঠপোষকতায় শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছিল। ইজরায়েল-জর্ডান শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২৬ অক্টোবর ১৯৯৪ । ১৯৯৭ সালে, ইজরায়েলি এজেন্ট কানাডিয়ান পাসপোর্ট ব্যবহার করে জর্ডানে প্রবেশ করে এবং হযরত হামাস নেতা খালেদ মেশালকে বিষাক্ত করে। ইজরায়েল বিষ বিষাক্ততা প্রদান করে এবং কিং হুসেনের শান্তি চুক্তি বাতিল করার হুমকি দেওয়ার পরে শেখ আহমেদ ইয়াসিন সহ ডজন ডজন রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয়। ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯, আবদুল্লাহ দ্বিতীয় তার পিতা হুসেনের মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহণ করেন। আব্দুল্লাহ যখন সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন তখন অর্থনৈতিক উদারনীতির সূচনা করেন এবং তার সংস্কারের ফলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ঘটে যা ২০০৮ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। আব্দুল্লাহ দ্বিতীয়কে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সরকারী-বেসরকারী অংশীদারত্বের উন্নতি এবং আকাবার মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল এবং জর্ডানের সমৃদ্ধ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের ভিত্তি প্রদানের জন্য ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও পাঁচটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেন। যাইহোক, পরবর্তী বছরগুলিতে জর্ডানের অর্থনীতিতে কষ্টের সম্মুখীন হয়েছিল, কারণ এটি গ্রেট মরসুমের প্রভাব এবং আরব বসন্ত থেকে স্পিলভারের প্রভাব নিয়ে কাজ করেছিল। আবু মুসাব আল-জারকাভির নেতৃত্বাধীন আল-কায়েদা ৯ নভেম্বর ২০০৫ এ আম্মানে তিনটি হোটেলে লবিতে সমন্বিত বিস্ফোরণ শুরু করে, যার ফলে ৬০ জন মারা যায় এবং ১১৫ জন আহত হয়। বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করে বোমা হামলা, জর্ডানের জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এই হামলাটি দেশের একটি বিরল ঘটনা বলে মনে করা হয় এবং জর্ডানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরে নাটকীয়ভাবে উন্নত হয়। তখন থেকে কোনও বড় সন্ত্রাসী হামলা ঘটেনি। আবদুল্লাহ এবং জর্দানকে ইজরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তির জন্য এবং পশ্চিমের সাথে তার সম্পর্কের জন্য ইসলামী চরমপন্থীদের অবমাননা হিসাবে দেখা হয়। আরব বসন্ত ২০১১ সালে আরব বিশ্বতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। এই বেশিরভাগ বিক্ষোভ আরব রাষ্ট্রগুলিতে কয়েকটি শাসনকে ভেঙে দিয়েছে, যা হিংস্র গৃহযুদ্ধের সাথে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। জর্দানে, ঘরোয়া অস্থিরতার প্রতিক্রিয়ায়, আবদুল্লাহ তার প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিস্থাপিত করেছিলেন এবং সংবিধান সংশোধন করা, জনসাধারণের স্বাধীনতা ও নির্বাচন পরিচালনার আইন সংশোধনসহ বেশ কয়েকটি সংস্কারের সূচনা করেছিলেন। ২০১২ সালের সাধারণ নির্বাচনে জর্দানীয় পার্লামেন্টে আনুপাতিক উপস্থাপনা পুনরায় চালু করা হয়েছিল, একটি পদক্ষেপ যা তিনি শেষ পর্যন্ত সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১.৪ মিলিয়ন সিরিয়ার উদ্বাস্তুদের প্রাকৃতিক সম্পদ-অভাবগ্রস্ত দেশ এবং ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভান্ট (আইএসআইএল) এর উত্থান সত্ত্বেও জর্ডানকে এই অঞ্চলে সরাতে যে সহিংসতা হ্রাস পেয়েছিল তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বঞ্চিত ছিল। রাজনীতি জর্ডানের রাজধানী রাজতান্ত্রিক শাসনকাঠামো প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল বর্তমানে জর্দানের উত্তরে সিরিয়া, পূর্বে ইরাক ও সৌদি আরব, দক্ষিণে সৌদি আরব ও আকাবা উপসাগর এবং পশ্চিমে ইসরায়েল ও পশ্চিম তীর। জর্দানের আয়তন ৮৯,৫৫৬ বর্গকিলোমিটার। আম্মান জর্দানের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। জর্ডান ২০০১ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০০,০০০০০ টাকা লোন নেয়, যা পরবর্তীতে তারা শোধ না করতে পারে নি, কিন্তু বাংলাদেশ মানবতার শিখরে দাঁড়িয়ে সেই ঋন ক্ষমা করে দেয়, পরবর্তীতে জর্ডানের অর্থনৈতিক ভাবে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সাহায্য করেছিল জনসংখ্যা অভিবাসী এবং উদ্বাস্তু প্রায় ২১,৭৫,৪৯১ ফিলিস্তিনি শরণার্থী এখানে আছে। ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের পর ১০ লক্ষ ইরাকি জর্দানে এসেছিলেন। সংস্কৃতি শিক্ষা ব্যবস্থা জর্ডান শিক্ষা ব্যবস্থা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:এশিয়ার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:মধ্যপ্রাচ্য বিষয়শ্রেণী:জর্ডান বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইসলামি রাজতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:আরব লিগের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৪৬-এ জর্ডানে প্রতিষ্ঠিত বিষয়শ্রেণী:আরবিভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:নিকট প্রাচ্যের রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৪৬-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:পশ্চিম এশিয়ার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
জর্দান নদী
https://bn.wikipedia.org/wiki/জর্দান_নদী
জর্দান নদীএই বাইবেলীয় নামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় বাইবেলীয় শব্দের প্রতিবর্ণীকরণে ব্যাখ্যাকৃত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে। (বিকল্প বানান: জর্ডান নদী; ; , নাহার হা-ইয়ার্দেন; ), যা শরিয়ত নদী () নামেও পরিচিত, হলো মধ্যপ্রাচ্যের একটি নদী যা মোটামুটিভাবে গালীল সাগরের উত্তর থেকে দক্ষিণদিকে বয়ে চলে মৃত সাগরে গিয়ে পতিত হয়। নদীটির পূর্ব সীমান্তে রয়েছে জর্ডান ও গোলান মালভূমি এবং পশ্চিম সীমান্তে রয়েছে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও ইসরায়েল। জর্ডান ও পশ্চিম তীর উভয়ই নদীটির কাছ থেকে তাদের নাম গ্রহণ করে। ইহুদিধর্ম ও খ্রিস্টধর্মে নদীটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে কেননা বাইবেলে বলা হয়েছে যে ইস্রায়েলীয়রা এই নদী পার হয়েই প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করেছিল এবং বাপ্তিস্মদাতা যোহন এই নদীতেই নাসরতীয় যীশুকে বাপ্তিস্ম করেছিলেন। ভূগল ব্যুৎপত্তি ইতিহাস প্রধান পরিবেশগত সমস্যা জলরাজনীতি সড়ক, সীমান্ত ক্রসিং, সেতু জলের উৎস হিসাবে গুরুত্ব ধর্মীয় তাৎপর্য হিব্রু বাইবেল নূতন নিয়ম আহরিত সাংস্কৃতিক তাৎপর্য আরও দেখুন তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:জর্ডানের নদী বিষয়শ্রেণী:মধ্যপ্রাচ্য বিষয়শ্রেণী:নতুন নিয়মের ভূগোল বিষয়শ্রেণী:অসম্পূর্ণ বিষয়শ্রেণী:এশিয়ার আন্তর্জাতিক নদী বিষয়শ্রেণী:পশ্চিম তীরের সীমান্ত বিষয়শ্রেণী:ইসরায়েল-জর্ডান সীমান্ত বিষয়শ্রেণী:ক্যাথলিক তীর্থস্থান বিষয়শ্রেণী:সিরিয়ার নদী বিষয়শ্রেণী:ইসরায়েলের ভূগোল বিষয়শ্রেণী:ফিলিস্তিন (অঞ্চল) এর ভূগোল বিষয়শ্রেণী:ফিলিস্তিনের ভূগোল বিষয়শ্রেণী:সিরিয়ার ভূগোল বিষয়শ্রেণী:পশ্চিম তীরের ভূগোল বিষয়শ্রেণী:মধ্যপ্রাচ্যের ভূমিরূপ বিষয়শ্রেণী:পবিত্র নদী বিষয়শ্রেণী:জর্ডানের পর্যটন বিষয়শ্রেণী:আন্তঃসীমান্ত নদী
ইহুদীধর্ম
https://bn.wikipedia.org/wiki/ইহুদীধর্ম
REDIRECT ইহুদি ধর্ম
বৃহস্পতি গ্রহ
https://bn.wikipedia.org/wiki/বৃহস্পতি_গ্রহ
বৃহস্পতি গ্রহ (ইংরেজি: Jupiter জূপিটার্‌, আ-ধ্ব-ব: ˈdʒu:.pɪ.tə(ɹ)) সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে পঞ্চম এবং আকার আয়তনের দিক দিয়ে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ। বৃহস্পতি ব্যতীত সৌর জগতের বাকি সবগুলো গ্রহের ভরকে একত্র করলে বৃহস্পতির ভর তা থেকে আড়াই গুণ বেশি হবে। বৃহস্পতিসহ আরও তিনটি গ্রহ অর্থাৎ শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুনকে একসাথে গ্যাস দানব বলা হয়। এই চারটির অপর জনপ্রিয় নাম হচ্ছে জোভিয়ান গ্রহ। জোভিয়ান শব্দটি জুপিটার শব্দের বিশেষণ রুপ। জুপিটারের গ্রিক প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয় জিউস। এই জিউস থেকেই জেনো- মূলটি উৎপত্তি লাভ করেছে। এই মূল দ্বারা বেশ কিছু জুপিটার তথা বৃহস্পতি গ্রহ সংশ্লিষ্ট শব্দের সৃষ্টি হয়েছে। যেমন: জেনোগ্রাফিক। পৃথিবী থেকে দেখলে বৃহস্পতির আপাত মান পাওয়া যায় ২.৮। এটি পৃথিবীর আকাশে দৃশ্যমান তৃতীয় উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। কেবল চাঁদ এবং শুক্র গ্রহের উজ্জ্বলতা এর থেকে বেশি। অবশ্য কক্ষপথের কিছু বিন্দুতে মঙ্গল গ্রহের উজ্জ্বলতা বৃহস্পতির চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। সুপ্রাচীনকাল থেকেই গ্রহটি জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও জ্যোতিষীদের কাছে পরিচিত ছিল। বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রচুর পৌরাণিক কাহিনী এবং ধর্মীয় বিশ্বাসও আবর্তিত হয়েছে বৃহস্পতিকে কেন্দ্র করে। রোমানরা গ্রহটির নাম রেখেছিল পৌরাণিক চরিত্র জুপিটারের নামে। জুপিটার রোমান পুরাণের প্রধান দেবতা। এই নামটি প্রাক-ইন্দো-ইউরোপীয় ভোকেটিভ কাঠামো থেকে এসেছে যার অর্থ ছিল আকাশের পিতা। বৃহস্পতি গ্রহের প্রাথমিক উপাদান হচ্ছে হাইড্রোজেন এবং সামান্য পরিমাণ হিলিয়াম। এতে অপেক্ষাকৃত ভারী মৌলসমূহ দ্বারা গঠিত একটি কেন্দ্রও থাকতে পারে। খুব দ্রুত ঘূর্ণনের কারণে এর আকৃতি হয়েছে কমলাকৃতির গোলকের মত, বিষুবের নিকটে ক্ষুদ্র কিন্তু চোখে পড়ার মত উল্লেখযোগ্য একটি স্ফীতি অংশ রয়েছে। বাইরের বায়ুমণ্ডল বিভিন্ন অক্ষাংশে বিভিন্ন ব্যান্ডে বিভক্ত যেগুলো বেশ সহজেই চোখে পড়ে। এ কারণে একটি ব্যান্ডের সাথে অন্য আরেকটি ব্যান্ডের সংযোগস্থলে ঝড়-ঝঞ্ঝাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করে। এ ধরনের পরিবেশের একটি অন্যতম ফলাফল হচ্ছে মহা লাল বিন্দু (great red spot)। এটি মূলত একটি অতি শক্তিশালী ঝড় যা সপ্তদশ শতাব্দী থেকে একটানা বয়ে চলেছে বলে ধারণা করা হয়। গ্রহটিকে ঘিরে এবটি দুর্বল গ্রহীয় বলয় এবং শক্তিশালী ম্যাগনেটোস্ফিয়ার রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য মতে, বৃহস্পতির রয়েছে ৯৫টি উপগ্রহ, যাদের মধ্যে ৪টি উপগ্রহ বৃহৎ আকৃতির। এই চারটিকে গ্যালিলীয় উপগ্রহ বলা হয়। কারণ ১৬১০ সালে গ্যালিলিও প্রথম এই চারটি উপগ্রহ আবিষ্কার করেছিলেন। সর্ববৃহৎ উপগ্রহ গ্যানিমেডের আকৃতি বুধ গ্রহের চেয়েও বেশি। বিভিন্ন সময় বৃহস্পতি গবেষণার উদ্দেশ্যে মহাশূন্য অভিযান প্রেরিত হয়েছে। পাইওনিয়ার এবং ভয়েজার প্রোগ্রামের মহাশূন্যযানসমূহ এর পাশ দিয়ে উড়ে গেছে। এর পরে গ্যালিলিও অরবিটার প্রেরিত হয়েছে। সবশেষে প্রেরিত অভিযানের নাম নিউ হরাইজন্‌স যা মূলত প্লুটোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এটি বৃহস্পতির নিকট দিয়ে গেছে। পরবর্তীতে ইউরোপা উপগ্রহের উদ্দেশ্যে অভিযান পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। গঠন thumb|left|ভয়েজার ১ হতে প্রাপ্ত বৃহস্পতি গ্রহের চিত্র বৃহস্পতি চারটি বৃহৎ গ্যাসীয় দানবের একটি, অর্থাৎ এটি প্রাথমিকভাবে কঠিন পদার্থ দ্বারা গঠিত নয়। সৌর জগতের বৃহত্তম এই গ্রহটির ব্যাস বিষুবরেখা বরাবর ১৪২,৯৮৪ কিমি। এর ঘনত্ব ১.৩২৬ গ্রাম/সেমি³ যা গ্যাসীয় দানবগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অবশ্য পার্থিব যেকোন গ্রহ থেকে এর ঘনত্ব কম। গ্যাসীয় দানবগুলোর মধ্যে নেপচুনের ঘনত্ব সর্বোচ্চ। গাঠনিক উপাদান বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডলের উর্দ্ধাংশের গাঠনিক উপাদানের মধ্যে রয়েছে পরমাণু সংখ্যার দিক দিয়ে ৯৩% হাইড্রোজেন ও ৭% হিলিয়াম। আর গ্যাস অণুসমূহের ভগ্নাংশের দিক দিয়ে ৮৬% হাইড্রোজেন ও ১৩% হিলিয়াম। ডানের ছকে পরিমণগুলো দেয়া আছে। হিলিয়াম পরমাণুর ভর যেহেতু হাইড্রোজেন পরমাণুর ভরের চারগুণ সেহেতু বিভিন্ন পরমাণুর ভরের অনুপাত বিবেচনায় আনা হলে শতকরা পরিমাণটি পরিবর্তিত হয়। সে হিসেবে বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডলের গাঠনিক উপাদানের অনুপাতটি দাড়ায় ৭৫% হাইড্রোজেন, ২৪% হিলিয়াম এবং বাকি ১% অন্যান্য মৌল। অন্যদিকে অভ্যন্তরভাগ খানিকটা ঘন। এ অংশে রয়েছে ৭১% হাইড্রোজেন, ২৪% হিলিয়াম এবং ৫% অন্যান্য মৌল। এছাড়া বায়ুমণ্ডল গঠনকারী অন্যান্য মৌলের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক উপগ্রহ বৃহস্পতি গ্রহের রয়েছে (নাসা:-ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইংরেজি: National Aeronautics and Space Administration (NASA)) মার্কিন সরকারের মহাকাশ-সম্পর্কিত বা জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত বৃহষ্পতির পূর্বে ৭৯ টি ও বর্তমানে বৃহস্পতি গ্রহের সর্বমোট একশো এক(১০১টি) প্রাকৃতিক উপগ্ৰহ ও মনোনীত পঁচানব্বই (৯৫টি) নামকরণকৃত প্রাকৃতিক উপগ্রহ রয়েছে। এদের মধ্যে ৪৭টির ব্যাস ১০কিলোমিটারের চেয়েও কম এবং ১৯৭৫ সালের পর আবিষ্কৃত। বৃহষ্পতির সবচেয়ে বড় চারটি উপগ্রহ হলো আইয়ো, ইউরোপা, গ্যানিমেড এবং ক্যালিস্টো, এদেরকে গ্যালিলীয় উপগ্রহ বলা হয়ে থাকে আবিষ্কারকের নামানুসারে এবং বৃহস্পতি গ্রহের প্রাকৃতিক উপগ্ৰহ গুলো নামকরণ করেন নাসার একটি শাখা (আইএইউ:-ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন, ইংরেজি:IAU: International Astronomical Union) থেকে দেওয়া হয়। নিম্নে ৯৫টি বৃহস্পতিগ্ৰহের প্রাকৃতিক উপগ্রহসমূহ হলো: মেটিস (Metis) অ্যাড্রাস্টিয়া (Adrastea) অ্যামালথিয়া (Amalthea) থীবী (Thebe) আইয়ো (Io) ইউরোপা (Europa) গ্যানিমেড (Ganymede) ক্যালিস্টো (Callisto) থেমিস্টো (Themisto) লেডা (Leda) হিমালিয়া (Himalia) লিসিথিয়া (Lysithea) ইলারা (Elara) ডিয়া (Dia) কার্পো (Carpo) ইউপোরি (Euporie) থেলক্সিনোই (Thelxinoe) ইউয়ান্থে (Euanthe) হেলিক (Helike) ওর্থোসাই (Orhtosie) লোকাস্ট (Locaste) প্র্যাক্সিডিক (Praxidike) হার্পালিক (Harpalyke) নেম (Mneme) হার্মিপ্পাস(Hermippus) থাইয়োন (Thyone) অ্যানানকি (Ananke) হার্স (Herse) অ্যাল্টন (Altne) কেল (Kale) টাইগেট (Taygete) ইরিনোম (Erinome) অ্যাওয়েড (Aoede) ক্যালিকোর (Kallichore) ক্যালাইক (Kalyke) কার্ম (Carme) ক্যালিরহো (Callirrhoe) ইউরিডোম (Eurydome) প্যাসিথি (Pasithee) কোর (Kore) সাইলিন (Cyllene) প্যাসিফা (Pasiphae) হেজেমোন (Hegemone) আর্ক (Arche) আইসোনো (Isonoe) সিনোপ (Sinope) স্পোন্ড (Sponde) অতনয় (Autonoe) মেগাক্লাইট (Megaclite) এরসা(Ersa) কলিররো(Calliro) অটোনো(Autono) আইরিন(Eirene) আইওকাস্ট(Iocast) আইত্নে(Aitne) অর্থোসিই(Orthosie) ফিলোফ্রোসাইন(Philophrosyne) চ্যান্ডেন(Chaldene) স্কন্দ(Sponde) ভ্যালেটুডো(Valetudo) ইউফেম(Euphem) পান্ডিয়া(pandia) হারপালকে(Harpalke) কালাইকে(Kalaike) ইউকেলেড(Eukelade) S/2010 J1 S/2010 J2 S/2016 J1 S/2003 J18 S/2011 J2 S/2017 J1 S/2003 J19 S/2017 J2 S/2017 J3 S/2017 J5 S/2017 J6 S/2017 J7 S/2017 J8 S/2017 J9 S/2011 J1 S/2003 J2 S/2003 J4 S/2003 J9 S/2003 J10 S/2003 J12 S/2003 J16 S/2011 J3 S/2016 J3 S/2016 J4 S/2018 J2 S/2018 J3 S/2022 J2 S/2022 J3 S/2018 J4 S/2021 J1 S/2021 J2 S/2021 J3 S/2021 J4 S/2021 J5 S/2021 J6 S/2022 J1 thumb|ক্যালিস্টো, গ্যানিমেড, বৃহষ্পতি এবং ইউরোপা তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:বৃহস্পতি বিষয়শ্রেণী:সৌরজগতের গ্রহ বিষয়শ্রেণী:প্রাচীনকাল থেকে জ্ঞাত জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু
কাবুল
https://bn.wikipedia.org/wiki/কাবুল
কাবুল (, ; ; ; ) পূর্ব-মধ্য আফগানিস্তানের একটি শহর এবং কাবুল প্রদেশ ও আফগানিস্তানের রাজধানী। শহরটি কাবুল নদীর তীরে সমুদ্রতল থেকে ১৮০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। কাবুল আফগানিস্তানের প্রধান অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী পর্বতাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ গিরিপথ খাইবার গিরিপথের কাছে অবস্থিত বলে কাবুল শহর সামরিক কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। শহরে বস্ত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, রাসায়নিক ও কাষ্ঠজাত দ্রব্য উৎপাদন করা হয়। কাবুলে বসবাসরত জাতিগুলির মধ্যে তাজিক জাতির লোকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে পশতুন জাতির লোকেরা সংখ্যালঘু জাতি হলেও গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাস কাবুল একটি প্রাচীন লোকালয় হলেও ১৫০৪ সালে এসে এটি প্রথম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ঐ বছর ভারতীয় মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর শহরটিকে তাঁর রাজধানী বানান। ১৫২৬ সালে দিল্লীতে সাম্রাজ্যের রাজধানী স্থানান্তরিত করা হলেও কাবুল মুঘল সাম্রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। ১৭৩৮ সালে পারস্যের শাসক নাদির শাহ শহরটি দখল করেন। ১৭৪৭ সালে আফগানিস্তানের প্রথম আমীর আহমদ শাহ কাবুলকে আফগানিস্তানের দুইটি রাজধানীর একটি বানান। অপর রাজধানীটি ছিল দক্ষিণের কান্দাহার শহর। ১৭৭৩ সালে আহমদ শাহের মৃত্যুর পর কাবুল দেশের একমাত্র রাজধানীতে পরিণত হয়। ঊনবিংশ শতকে খাইবার গিরিপথের নিয়ন্ত্রণের জন্য শহরটি ব্রিটিশ, পারসিক ও রুশদের দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। এই শতকে ব্রিটিশ সেনারা দুইবার (১৮৩৯-১৮৪২ এবং ১৮৭৯-১৮৮০) কাবুল দখল করে। ১৯৪০ সালের পর শিল্পকেন্দ্র হিসেবে কাবুলের বিকাশ ঘটে। বর্তমান কালে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত সেনারা কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ১৯৯২ সালের শুরুতে মুজাহেদিনদের বিভিন্ন দল কাবুল দখলে নেয়। ১৯৯৬ সালে তালিবান নামের একটি চরমপন্থি ইসলামি আন্দোলন দুই বছর প্রচেষ্টার পর শহরটি দখল করে এবং আফগান সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ২০০১ সালের নভেম্বর মাসে উত্তরের জোট বা যুক্তফ্রন্ট তালিবানদের হাত থেকে কাবুল পুনরুদ্ধার করে। ২০২১ সালের ১৫ ই আগস্ট পুনরায় কাবুল পুনরুদ্ধার করে তালেবান। পুরনো সরকারকে উৎখাত করে সেখানে তারা নতুন করে ইসলামিক আমিরাত তথা তালিবানি সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। কাবুল সহ পুরো আফগানিস্তানে তালেবান ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা "আফগানিস্তান ইসলামী আমিরাত" প্রতিষ্ঠা করেছে। ভূগোল কাবুল দেশের পূর্ব অংশে, একটি সরু উপত্যকায় অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ১,৭৯১ মিটার (৫,৮৭৬ ফুট)। এটি কাবুল নদীর তীরে হিন্দুকুশ পর্বতমালার মধ্যে আবদ্ধ। পুরনো শহরের দক্ষিণে অবিলম্বে প্রাচীন শহরের দেয়াল এবং শের দরজা পাহাড় রয়েছে যার পিছনে শুহাদাই সালিহিনের কবরস্থান রয়েছে। আরও কিছুটা পূর্ব দিকে হল প্রাচীন বাল হিসার দুর্গ, যার পিছনে রয়েছে কোল-ই হাসমত খান হ্রদ। এর অবস্থানটিকে "পাহাড় দ্বারা ঘেরা বাটি" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে।Canada in Afghanistan: The War So Far by Peter Pigott কিছু পাহাড় হল (যাকে কোহ বলা হয়) এর মধ্যে রয়েছে: খায়ের খান-ই শামালি, খাজা রাওয়াশ, সখী বারান তে, চিহিল সুতুন, কুরুগ, খাজা রাজাক এবং শের দরজা। পশ্চিম কাবুলে শহুরে অঞ্চলের মধ্যে দুটি পাহাড় রয়েছে: আসামায়ি (এটি টেলিভিশন পাহাড় হিসাবেও পরিচিত) এবং আলী আবাদ। শহরের মধ্যে পাহাড়ের মধ্যে (যাকে তপা বলা হয়) বিবি মাহরো এবং মারজান অন্তর্ভুক্ত। শহরটি আয়তন ১,০২৩ বর্গকিলোমিটার (৩৯৫ বর্গ মাইল)। এটি এ পর্যন্ত দেশের বৃহত্তম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর নিকটতম বিদেশি রাজধানী শহরগুলি হলো ইসলামাবাদ, দুশানবে, তাশখন্দ, নয়াদিল্লি এবং বিশকেক । কাবুল ইস্তাম্বুল (পশ্চিম এশিয়া) এবং হ্যানয়ের (পূর্ব এশিয়া) মোটামুটি সমান দূরত্বে অবস্থিত। কাবুলের শীতকালীন বৃষ্টিপাত (প্রায় একচেটিয়াভাবে তুষার হিসাবে পতিত হয়) এবং বসন্তের মাসে শীতকালে বৃষ্টিপাতের সাথে শীতল আধা-শুষ্ক আবহাওয়া (কপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস বিএসকে) থাকে। দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলের তুলনায় তাপমাত্রা শীতল, মূলত শহরের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে। গ্রীষ্মে খুব কম আর্দ্রতা থাকে, যা উত্তাপ থেকে মুক্তি দেয়। শরৎকালে উষ্ণ দুপুর এবং তীব্র শীতল সন্ধ্যায় বৈশিষ্ট্যযুক্ত। শীতকালের জানুয়ারির দৈনিক গড় তাপমাত্রা −২.৩ °সে (২৭.৯ °ফা) থাকে। বসন্ত বছরের আর্দ্রতম সময়। রৌদ্রের পরিস্থিতি বছরব্যাপী আধিপত্য বিস্তার করে। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ১২.১ °সে (৫৩.৮ °ফা), আফগানিস্তানের অন্যান্য বড় শহরগুলির তুলনায় অনেক কম। জনসংখ্যা থাম্ব|কাবুলে আফগান মেয়েরা, ২০১২ সাল ২০১৯ সালে হিসাব অনুযায়ী কাবুলের জনসংখ্যা অনুমান করা হয়েছিল ৪.১১৪ মিলিয়ন। আরও একটি ২০১৫ সালের অনুমানে জনসংখ্যা ৩,৬৭৮,০৩৪ ছিল বলে ধারণ করা হয়। যুদ্ধের কারণে শহরের জনসংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটেছে। শহরের জনসংখ্যার প্রায় ৭৪% সুন্নি ইসলামকে অনুসরণ করে এবং ২৫% শিয়া (মূলত হাজারারা) ইসলামকে অনুসরণ করে। অবশিষ্ট ১% অনুসারী শিখ এবং হিন্দুধর্ম ধর্মালম্বী হিসেবে পরিচিত, সেইসাথে খ্রিস্টান বাসিন্দা (ফার্স্ট লেডি রুলা গণি) এবং ইহুদি বাসিন্দাও (জ্যাবলন সিমিনটোব) রয়েছে। অন্যান্য খ্রিস্টানরাও রয়েছে তবে তারা অ-আফগান এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের চেয়ে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মী। কাবুলে ছোট ভারতীয় এবং তুর্কি সম্প্রদায়ও রয়েছে (বেশিরভাগ ব্যবসায়-মালিক এবং বিনিয়োগকারী), এবং ১৯৮০ এর দশকে একটি বিশাল রুশ সম্প্রদায় ছিল। প্রশাসন ও আইন ব্যবস্থা শহরের পূর্ব প্রান্তে পুল-ই-চরখি দেশের সবচেয়ে বড় কারাগার। এটি নির্যাতন ও মৃত্যুদণ্ডের জন্য কুখ্যাত। আফগানিস্তানের ন্যাশনাল আর্মির ২০১তম বাহিনী পুল-ই-চরখির কাছাকাছি অবস্থিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উচ্চশিক্ষা বিদ্যাপীঠ। ১৯৯২ সালের যুদ্ধে এটি বন্ধ হয়ে যায়। দর্শনীয় স্থান আফগানিস্তান জাতীয় জাদুঘর যা কাবুলের মিউজিয়াম নামে পরিচিত, আফগানিস্তানের কাবুল শহরের কেন্দ্রের ৯ কিমি দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বিতল ভবন জাদুঘর । পরিবহণ আফগানিস্তানে কাবুলের শহরতলী থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তরে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অবস্থিত। এটি দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সর্বাধিক সামরিক ঘাঁটির অন্যতম হিসাবে স্বীকৃত । তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ কাবুল শহরের মানচিত্র What's On In Kabul (pdf format) কাবুলের ঐতিহাসিক ছবি কাবুলের গল্প কাবুলের কাফেলা Kabul - City of Light, 9 Billion dollar modern urban development project Sada-e Azadi Radio/TV/Newspaper (ISAF) People of Kabul - report by Radio France Internationale in English Kabul travel guide from Wikivoyage বিষয়শ্রেণী:আফগানিস্তান বিষয়শ্রেণী:আফগানিস্তানের শহর বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দের স্থাপনা বিষয়শ্রেণী:এশিয়ার রাজধানী বিষয়শ্রেণী:রেশম পথের উপর অবস্থিত জনবহুল স্থান বিষয়শ্রেণী:কাবুল প্রদেশের জনবহুল স্থান
কালাহারি মরুভূমি
https://bn.wikipedia.org/wiki/কালাহারি_মরুভূমি
কালাহারি (ইংরেজি: Kalahari, আফ্রিকান্স: Dorsland বা তৃষ্ণার্ত অঞ্চল) আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের মালভূমিতে অবস্থিত একটি অববাহিকার মত সমতল ভূমি। বতসোয়ানার প্রায় পুরো অঞ্চল, নামিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় এক তৃতীয়াংশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নর্দার্ন কেইপ প্রদেশের সর্ব উত্তরের অংশটুকু এর মধ্যে পড়ে। দক্ষিণ-পশ্চিমে এটি নামিবিয়ার উপকূলবর্তী নামিব মরুভূমির সাথে মিলিত হয়। কালাহারি উত্তর দক্ষিণে সর্বোচ্চ ১০০০ মাইল পর্যন্ত দীর্ঘ এবং পূর্ব পশ্চিমে এর সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০০ মাইল, মোট ক্ষেত্রফল প্রায় ৩৬০,০০০ বর্গমাইল তথা ৯৩০,০০০ বর্গকিলোমিটার।Kalahari, Encyclopedia Britannica thumb|right|250px|নামিবিয়ার কালাহারি তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:নামিবিয়ার মরুভূমি বিষয়শ্রেণী:বোতসোয়ানার মরুভূমি বিষয়শ্রেণী:দক্ষিণ আফ্রিকার মরুভূমি
ক্যাংগারু
https://bn.wikipedia.org/wiki/ক্যাংগারু
right|thumb|শিশু সহ স্ত্রী ক্যাংগারু thumbnail|right|240px|লাল ক্যাংগারু (Macropus rufus) ক্যাংগারু ম্যাক্রোপডিডায়ী গোত্রের এক প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী। এদের কেবলমাত্র অস্ট্রেলিয়া ও প্রতিবেশী দ্বীপগুলিতে দেখা যায়। এরা পিছনের দুই পায়ের উপর লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। মার্সুপিয়াল বলে ক্যাঙ্গারুরা অপরিণত বাচ্চার জন্ম দেয়। বাচ্চাগুলি মায়ের পেটের থলিতে থেকে বড় হয়। দুইটি জীব পরিবারে ক্যাঙ্গারুর প্রায় ৫০টি ভিন্ন প্রজাতি আছে। বড় ক্যাঙ্গারুগুলি ম্যাক্রোপোডিডে পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এদের মধ্যে আছে লাল ক্যাঙ্গারু, ধূসর ক্যাঙ্গারু, ওয়ালাবি, প্যাডিমেলন এবং কুওক্কা। অন্য পরিবারটির নাম পোটোরইডে। এই পরিবারে ইঁদুর-ক্যাঙ্গারু, বেটং এবং পোটোরু অন্তর্ভুক্ত। লাল ও ধূসর ক্যাঙ্গারু আকারে সবচেয়ে বড় হয়। এরা লম্বায় ২ মিটার দীর্ঘ এবং ৮৫ কেজি ওজনের হতে পারে। সবচেয়ে ছোট ক্যাঙ্গারু হল ইঁদুর-ক্যাঙ্গারু। এরা লম্বায় লেজ বাদে এক ফুটের মত হয়। ক্যাঙ্গারু কেবল অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখন্ডে, নিউ গিনিতে, এবং আশেপাশের দ্বীপগুলিতে, যেমন তাসমানিয়াতে পাওয়া যায়। অন্য কিছু দেশে ক্যাঙ্গারু নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেমন নিউজিল্যান্ডে টাম্মার এবং হাওয়াইতে ওয়ালাবির বসতি স্থাপন করানো হয়েছে। ক্যাঙ্গারুরা অস্ট্রেলিয়া ও নিউগিনির প্রায় সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায়। লাল ও ধূসর ক্যাঙ্গারু তৃণভূমি, সাভানা, এবং উন্মুক্ত বনাঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। রক ওয়ালাবিগুলি দক্ষিণের মরুভূমিতে উল্লম্ব পাহাড়ের দেয়াল ঘেঁষে বাস করে। বেটংগুলি ঊষর অঞ্চলে গর্ত খুঁড়ে বাস করে। গেছো ক্যাঙ্গারু অতিবৃষ্টি অরণ্যের গাছের উঁচু অংশে বাস করে, আর ইঁদুর-ক্যাঙ্গারুগুলি একই অরণ্যের মাটির ঝোপঝাড়গুলিতে ঘুরে বেড়ায়। লাল-গলাবিশিষ্ট ওয়ালাবিগুলি বিভিন্ন বসতিতে বাস করে, যার মধ্যে আছে তাসমানিয়ার পর্বতগুলির বরফময় শৃঙ্গ। বিপন্ন কুওক্কাগুলি এখন কেবল অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের দুইটি দ্বীপে দেখতে পাওয়া যায়। অনেক ক্যাঙ্গারু প্রজাতির অভিযোজনের ক্ষমতা প্রবল। এরা উন্মুক্ত পার্ক, বাগান, এমনকি গল্‌ফ কোর্সেও বাসা গাড়ে। ফসিলের নমুনা থেকে অনুমান করা হয় যে ক্যাঙ্গারুরা প্রায় ১৫ মিলিয়ন বছর আগে, মায়োসিন যুগে, অস্ট্রেলিয়াতে আসে। ৮ মিলিয়ন বছর আগে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে অস্ট্রেলিয়ার অতিবৃষ্টি অরণ্যগুলির জায়গায় উন্মুক্ত বনাঞ্চল ও সাভানা তৃণভূমির আবির্ভাব ঘটে, ফলে ক্যাঙ্গারুরাও বিবর্তিত হয়ে বর্তমানে আমাদের পরিচিত নানা প্রজাতিতে রূপ নেয়। আদি ক্যাঙ্গারুগুলি ছিল বিশালাকার। এরা প্রায় ১০ ফুট লম্বা ও প্রায় ২০০ কেজি ভারী ছিল। জোসেফ ব্যাংকের ১৭৭০ সালের ১২ই জুলাইয়ে ডায়রির পাতায় ক্যাঙ্গারু কথাটার প্রথম দেখা পাওয়া যায়। বর্তমানে যেখানে কুকটাউন অবস্থিত সেখানে ক্যাপ্টেন কুকের জাহাজ গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের সঙ্গে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাহাজ মেরামতির জন্য সাত সপ্তাহের জন্য তাদের সেখানে থাকতে হয়েছিল। জোসেফ ব্যাংক ও ক্যাপ্টেন কুক এখানে ক্যাঙ্গারু দেখতে পান। একটা গল্প প্রচলিত আছে যে , তারা এক আদিবাসীকে প্রাণিটার নাম জানতে চান । সেই আদিবাসী বলেন "ক্যাঙ্গারু" অর্থাৎ "আমি তোমাদের কথা বুঝতে পারছি না"। কুক ও তার সঙ্গী ভাবে প্রাণিটার নাম বুঝি ক্যাঙ্গারু। এইভাবে ক্যাঙ্গারু নামটা সভ্য সমাজে প্রচলিত হয়ে যায়। চিত্রশালা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ The Kangaroo Genome Project at Australian National University Courtship and Mating Prehistoric mammals বিষয়শ্রেণী:স্তন্যপায়ী প্রাণী বিষয়শ্রেণী:ওশেনিয়ার প্রাণিকুল বিষয়শ্রেণী:স্তন্যপায়ী পরিবার বিষয়শ্রেণী:জন অ্যাডওয়ার্ড গ্রে কর্তৃক নামকরণকৃত ট্যাক্সা
ক্যান্সাস
https://bn.wikipedia.org/wiki/ক্যান্সাস
থাম্ব|হোইজিংটন, ক্যানসাসের বিশদ মানচিত্র ক্যান্সাস () মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্য। এর রাজধানী টোপিকা এবং বৃহত্তম শহর উইচিটা, এর সর্বাধিক জনবহুল কাউন্টি এবং বৃহত্তম কর্মসংস্থান কেন্দ্র জনসন কাউন্টি । ক্যানসাসের উত্তরে নেব্রাস্কা সীমানা; পূর্ব দিকে মিসৌরি ; দক্ষিণে ওকলাহোমা ; এবং পশ্চিমে কলোরাডো । ক্যান্সাসের নাম ক্যান্সাস নদীর নামানুসারে, যার ফলস্বরূপ কানসা স্থানীয় আমেরিকানরা যারা এর তীরে বাস করত তাদের নামকরণ করা হয়েছিল। The Encyclopedia of Kansas (1994) John Koontz, p.c. হাজার হাজার বছর ধরে, এখন যা কানসাসে রয়েছে তা প্রচুর এবং বিচিত্র স্থানীয় আমেরিকান উপজাতির বাসস্থান ছিল। রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে উপজাতিরা সাধারণত নদীর উপত্যকাসহ গ্রামে বাস করত। রাজ্যের পশ্চিম অঞ্চলে উপজাতিরা আধা যাযাবর এবং বিশাল পশু বাইসন শিকার করত। আরও দেখুন ক্যান্সাসের রূপরেখা - কানসাস সম্পর্কিত বিষয়গুলির সংগঠিত তালিকা কানসাস সম্পর্কিত নিবন্ধগুলির সূচি তথ্যসূত্র গ্রন্থ-পঁজী ; 559 pages. ; 535 pages. ; 1204 pages. ; 5 volumes; 2731 pages; (Vol1), (Vol2), (Vol3), (Vol4), (Vol5); the 1919 edition contains additional biographies. ; 369 pages. ; 3 volumes; 2723 pages; (Vol1), (Vol2), (Vol3) ; 610 pages. ; 3 volumes; 1616 pages; (Hathi Trust) (Google Books) ; 366 pages; (Google Books) বহিঃসংযোগ কানসাস রাজ্য কানসাস ভ্রমণ এবং পর্যটন বিভাগ কানসাস হিস্টোরিকাল সোসাইটি কানসাস মেমোরি - কানসাস হিস্টোরিকাল সোসাইটির দেওয়া নথি, ফটোগ্রাফ এবং অন্যান্য প্রাথমিক উৎস কানসাস স্টেট এজেন্সি ডেটাবেসস - কানসাস রাজ্য এজেন্সিগুলির দ্বারা উৎপাদিত অনুসন্ধানযোগ্য ডাটাবেসের তালিকাভুক্ত তালিকা ইউএসজিএস রিয়েল-টাইম, ভৌগোলিক এবং কানসাসের অন্যান্য বৈজ্ঞানিক সংস্থানসমূহ ইউএসডিএ থেকে কানসাস রাজ্য তথ্য বিষয়শ্রেণী:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য বিষয়শ্রেণী:কানসাস
গ্যাবন
https://bn.wikipedia.org/wiki/গ্যাবন
থাম্ব|গ্যাবনে সৈকতের দৃশ্য গ্যাবন (, ; ; ) সরকারি নাম গ্যাবনীয় প্রজাতন্ত্র ( ) মধ্য আফ্রিকার পশ্চিমে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। এর উত্তর-পশ্চিমে বিষুবীয় গিনি , উত্তরে ক্যামেরুন, পূর্বে ও দক্ষিণে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর। গ্যাবনের আয়তন ২৬৭,৬৬৭ বর্গকিমি। লিব্রভিল হল দেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। এটি ১৯৬০ সালের ১৭ আগস্ট ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত মাত্র দুইজন স্বৈরশাসক দেশটি শাসন করেছেন। ৯০- এর দশকের শুরুতে বহুদলীয় ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয় এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান পাস করা হয়। দেশটির জনসংখ্যা খুবই কম (২০ লক্ষ)। এখানে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ আছে এবং অনেক বিদেশী বিনিয়োগও ঘটেছে এবং এর ফলে গ্যাবন আফ্রিকার সবচেয়ে সমৃদ্ধ দেশগুলির একটি হয়েছে। এর মানব উন্নয়ন সূচক আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে শীর্ষে। ২০২৩ সালের ২৬ আগস্ট একটি বিতর্কিত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট আলি বোঙ্গো ওন্দিম্বা তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হওয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির জাতীয় নির্বাচনী সংস্থা। এর ফলে ২৯ আগস্ট নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে এর কয়েকজন সামরিক কর্মকতা দেশের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দেয়। তখন থেকে পুনরায় সামরিক শাসন জারি করা হয়। ব্যুৎপত্তি গ্যাবনের নামটি গ্যাবাও থেকে উদ্ভুত হয়েছে, পর্তুগিজ ভাষায় "ক্লোক", যা প্রায় লিব্রেভিলের কোমো নদীর মোহনার আকৃতি। ইতিহাস বাম|থাম্ব|১৬৭০ সালে পশ্চিম আফ্রিকার একটি মানচিত্র প্রাক-ঔপনিবেশিক যুগ (প্রাক-১৮৮৫) এই এলাকার প্রাচীনতম অধিবাসীরা ছিল পিগমি জাতি।তারা স্থানান্তরিত হওয়ার সাথে সাথে বান্টু উপজাতিরা মূলত তাদের স্থলাভিষিক্ত এবং শোষিত হয়েছিল। পঞ্চদশ শতাব্দীতে প্রথম ইউরোপীয়রা এসেছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে, গ্যাবনে ওরুঙ্গু নামে পরিচিত একটি মায়েনি-ভাষী রাজ্য গঠিত হয়েছিল। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে ক্রীতদাস ব্যবসার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এটি সেই সময়ের মধ্যে গ্যাবনে গড়ে ওঠা বাণিজ্য কেন্দ্রগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছিল। ১৭২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, বার্থোলোমিউ রবার্টস বা বার্টি ডুডু, ইংরেজিতে ব্ল্যাক বার্ট নামে পরিচিত একজন জলদস্যু যিনি কেপ লোপেজের কাছে সমুদ্রে মারা যান। তিনি ১৭১৯ থেকে ১৭২২ সাল পর্যন্ত আমেরিকা ও পশ্চিম আফ্রিকার জাহাজে অভিযান চালিয়েছিলেন। ঔপনিবেশিক যুগ (১৮৮৫-১৯৬০) ফরাসি অভিযাত্রী পিয়েরে স্যাভরগান ডি ব্রাজা ১৮৭৫ সালে গ্যাবন-কঙ্গো এলাকায় তার প্রথম মিশনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ফ্রান্সভিল শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং পরে ঔপনিবেশিক গভর্নর ছিলেন। ১৮৮৫ সালে যখন ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে এটি দখল করে তখন বেশ কয়েকটি বান্টু গোষ্ঠী বর্তমানের গ্যাবন অঞ্চলে বসবাস করতো। বাম|থাম্ব|গ্যাবনের যুদ্ধের ফলে মুক্ত ফরাসি বাহিনী ১৯৪০ সালে ভিচি ফরাসি বাহিনী থেকে গ্যাবনের উপনিবেশ গ্রহণ করে ১৯১০ সালে, গ্যাবন ফরাসি নিরক্ষীয় আফ্রিকার চারটি অঞ্চলের একটি ফেডারেশনে পরিণত হয়, যা ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে, মিত্ররা ভিচি ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক প্রশাসনকে উৎখাত করার জন্য গ্যাবন আক্রমণ করেছিল। ১৯৫৮ সালের ২৮ নভেম্বর, গ্যাবন ফরাসি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় এবং ১৯৬০ সালের ১৭ আগস্ট এটি সম্পূর্ণ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী (১৯৬০-বর্তমান) ১৯৬১ সালে গ্যাবনের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন লিওন এম'বা ও তার উপরাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন ওমর বঙ্গো ওনডিম্বা। এম'বা' ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর সংবাদপত্রকে দমন করা হয়, রাজনৈতিক বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকে ধীরে ধীরে ক্ষমতা থেকে বাদ দেওয়া হয়, এবং রাষ্ট্রপতি পদে ক্ষমতা ন্যস্ত করার জন্য ফরাসি লাইন ধরে সংবিধান পরিবর্তন করে নিজের জন্য একক পদ অধিকৃত করেন। যাইহোক, ১৯৬৪ সালের জানুয়ারিতে যখন এম'বা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন, তখন একটি সেনা অভ্যুত্থান তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে এবং সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিল। ফরাসি প্যারাট্রুপাররা ২৪ ঘন্টার মধ্যে এম'বাকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে উড়ে এসেছিল। কয়েকদিনের লড়াইয়ের পর, অভ্যুত্থান শেষ হয় এবং ব্যাপক বিক্ষোভ ও দাঙ্গা সত্ত্বেও বিরোধীদের কারারুদ্ধ করা হয়। ফরাসি সৈন্যরা আজও গ্যাবনের রাজধানী উপকণ্ঠে ক্যাম্প দে গল-এ অবস্থান করছে। ১৯৬৭ সালে এম'বা মারা গেলে বঙ্গো তার স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯৬৮ সালের মার্চে, বঙ্গো বিডিজি ভেঙে দিয়ে এবং একটি নতুন দল - পার্টি ডেমোক্রেটিক গ্যাবোনাইজ (পিডিজি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গ্যাবনকে একদলীয় রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। তিনি পূর্ববর্তী রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নির্বিশেষে সব গ্যাবোনীয়দেরকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। বঙ্গো সরকারের উন্নয়ন নীতির সমর্থনে একটি একক জাতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন, পিডিজিকে আঞ্চলিক ও উপজাতীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে পরিপ্লুত করার জন্য একটি হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন যা অতীতে গ্যাবোনীয় রাজনীতিকে বিভক্ত করেছিল। বঙ্গো ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন; ১৯৭৫ সালের এপ্রিলে উপরাষ্ট্রপতির পদটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল এবং প্রধানমন্ত্রীর পদটি স্থলাভিষিক্ত করা হয়, যার স্বয়ংক্রিয় উত্তরাধিকারের অধিকার ছিল না। বঙ্গো ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বর এবং ১৯৮৬ সালের নভেম্বরে ৭ বছরের মেয়াদে পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন।Background note: Gabon . ১৯৯০ সালের প্রথম দিকে অর্থনৈতিক অসন্তোষ এবং রাজনৈতিক উদারীকরণের অভিপ্রায় ছাত্র ও শ্রমিকদের সহিংস বিক্ষোভ ও ধর্মঘটে উস্কে দিয়েছিল। শ্রমিকদের অভিযোগের জবাবে, বঙ্গো তাদের সাথে সেক্টর-বাই-সেক্টর ভিত্তিতে আলোচনা করে উল্লেখযোগ্য মজুরি ছাড় দিয়েছিলেন। উপরন্তু, তিনি পিডিজি উন্মুক্ত করার এবং গ্যাবনের ভবিষ্যত রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ১৯৯০ সালের মার্চ-এপ্রিলে একটি জাতীয় রাজনৈতিক সম্মেলন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সম্মেলনে পিডিজি এবং ৭৪টি রাজনৈতিক সংগঠন অংশ নিয়েছিল। অংশগ্রহণকারীরা মূলত দুটি অনির্দিষ্ট জোটে বিভক্ত, ক্ষমতাসীন পিডিজি এবং এর মিত্ররা, ইউনাইটেড ফ্রন্ট বিরোধী জোট ও দল যা বিচ্ছিন্নতাকামী মোরেনা ফান্ডামেন্টাল এবং গ্যাবোনিজ প্রোগ্রেস পার্টি নিয়ে গঠিত।Background note: Gabon . ১৯৯০ সালের সম্মেলনে একটি জাতীয় সিনেট গঠন, বাজেট প্রক্রিয়ার বিকেন্দ্রীকরণ, সমাবেশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, এবং বহির্গমন ভিসার প্রয়োজনীয়তা বাতিলসহ ব্যাপক রাজনৈতিক সংস্কারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। বহুদলীয় গণতন্ত্রে রাজনৈতিক ব্যবস্থার রূপান্তরকে গাইড করার প্রচেষ্টায় বঙ্গো পিডিজি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী ক্যাসিমির ওয়ে-এমবা-এর নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেন। গ্যাবোনিজ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক গ্রুপিং (আরএসডিজি) এর ফলে সরকারকে বলা হয়েছিল, এটি পূর্ববর্তী সরকারের চেয়ে ছোট ছিল এবং এর মন্ত্রিসভায় বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করেছিল। আরএসডিজি ১৯৯০ সালের মে মাসে একটি অস্থায়ী সংবিধানের খসড়া তৈরি করেছিল যা মৌলিক অধিকার এবং একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রদান করে তবে রাষ্ট্রপতির জন্য শক্তিশালী নির্বাহী ক্ষমতা বজায় রেখেছিল। একটি সাংবিধানিক কমিটি এবং জাতীয় পরিষদে অধিকতর পর্যালোচনার পর, এই দলিলটি ১৯৯১ সালের মার্চে কার্যকর হয়।Background note: Gabon . ১৯৯০ সালের এপ্রিলের সম্মেলনের পরেও পিডিজির বিরোধিতা অব্যাহত ছিল এবং ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বরে, দুটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা উন্মোচিত এবং ব্যর্থ করা হয়েছিল। বিরোধীদলীয় নেতার অকাল মৃত্যুর পর সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ সত্ত্বেও প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে প্রথম বহুদলীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং পিডিজি বিপুল ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল।Background note: Gabon . থাম্ব|রাষ্ট্রপতি জর্জ ডব্লিউ বুশ ওভাল অফিসে রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গোকে স্বাগত জানাচ্ছেন, মে ২০০৪ ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো ৫১% ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পরে, বিরোধী প্রার্থীরা নির্বাচনের ফলাফলকে বৈধতা দিতে অস্বীকার করেছিল। গুরুতর নাগরিক অশান্তি এবং সহিংস দমন-পীড়নের ফলে সরকার এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে একটি রাজনৈতিক সমাধানের দিকে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি হয়েছিল। এই আলোচনার ফলে ১৯৯৪ সালের নভেম্বরে প্যারিস চুক্তি হয়, যার অধীনে বেশ কয়েকজন বিরোধী ব্যক্তিত্বকে জাতীয় ঐক্যের সরকারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এই ব্যবস্থা শীঘ্রই ভেঙ্গে যায়, তবে, এবং ১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সালের আইনসভা ও পৌরসভা নির্বাচনগুলি নতুন করে দলীয় রাজনীতির পটভূমি প্রদান করেছিল। পিডিজি আইনসভা নির্বাচনে ব্যাপক জয় লাভ করেছিল, কিন্তু লিব্রেভিল সহ বেশ কয়েকটি বড় শহরে ১৯৯৭ সালের স্থানীয় নির্বাচনে বিরোধী মেয়ররা নির্বাচিত হয়েছিল।Background note: Gabon . বিভক্ত বিরোধিতার মুখোমুখি হয়ে, রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের সাথে সহজে পুনঃনির্বাচনে বিজয়ী হন। যদিও বঙ্গোর প্রধান বিরোধীরা এই ফলাফলকে প্রতারণামূলক হিসাবে প্রত্যাখ্যান করেছিল, কিছু আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক অনেক অনুভূত অনিয়ম সত্ত্বেও ফলাফলগুলিকে প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন এবং ১৯৯৩ সালের নির্বাচনের পরে কোনও নাগরিক অশান্তি ছিল না। ২০০১-২০০২ সালে অনুষ্ঠিত ত্রুটিপূর্ণ আইনসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেও যা অনেক ছোট বিরোধী দল বয়কট করেছিল এবং তাদের প্রশাসনিক দুর্বলতার জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল এবং পিডিজি ও সহযোগী স্বতন্ত্রদের আধিপত্যে একটি জাতীয় পরিষদ তৈরি হয়েছিল। ২০০৫ সালের নভেম্বরে রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো তার ষষ্ঠ মেয়াদে নির্বাচিত হন। তিনি সহজেই পুনঃনির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন, তবে বিরোধীরা দাবি করেছিলেন যে ব্যালটিং প্রক্রিয়া অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তার জয়ের ঘোষণার পর সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটেছিল তবে সামগ্রিকভাবে গ্যাবন সাধারণত শান্তিপূর্ণ ছিল।Background note: Gabon . ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে আবার জাতীয় পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের অনিয়মের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বেশ কয়েকটি আসন সাংবিধানিক আদালত বাতিল করেছিল, কিন্তু ২০০৭ সালের প্রথম দিকে পরবর্তী রান-অফ নির্বাচনে আবারও পিডিজি নিয়ন্ত্রিত জাতীয় পরিষদ গঠিত হয়েছিল। Background note: Gabon . থাম্ব|গ্যাবনে স্বাধীনতা দিবস উদযাপন ২০০৯ সালের ৮ জুন, রাষ্ট্রপতি ওমর বংগো বার্সেলোনার একটি স্পেনীয় হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এবং গ্যাবোনীয় রাজনীতিতে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়। সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী, সিনেটের সভাপতি রোজ ফ্রান্সিন রোগোমবে ২০০৯ সালের ১০ জুন অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি হন। গ্যাবনের ইতিহাসে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন যেটিতে ওমর বঙ্গোকে একজন প্রার্থী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, ২০০৯ সালের ৩০ আগস্ট, রাষ্ট্রপতি পদে ১৮ জন প্রার্থী নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনের আগে কিছু বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ দেখা গিয়েছিল, তবে কোনো উল্লেখযোগ্য বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। ওমর বঙ্গোর ছেলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা আলী বঙ্গো ওনডিম্বাকে সাংবিধানিক আদালতের ৩ সপ্তাহের পর্যালোচনার পর আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়; ২০০৯ সালের ১৬ অক্টোবরে তার অভিষেক হয়েছিল।Background note: Gabon . অনেক বিরোধী প্রার্থীর জালিয়াতির দাবির কারণে আদালতের পর্যালোচনাটি প্ররোচিত হয়েছিল, নির্বাচনের ফলাফলের প্রাথমিক ঘোষণার সাথে সাথে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং পিডিজি শাসনের বিরোধিতার দীর্ঘকালীন দুর্গ পোর্ট-জেন্টিলে অভূতপূর্ব সহিংস বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। পোর্ট-জেন্টিলের নাগরিকরা রাস্তায় নেমে আসে এবং ফরাসি দূতাবাস ও একটি স্থানীয় কারাগার সহ অসংখ্য দোকান ও বাসস্থান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সরকারিভাবে, দাঙ্গার সময় মাত্র চারটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তবে বিরোধী দল এবং স্থানীয় নেতারা আরও অনেক হয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন। অবরুদ্ধ পুলিশকে সমর্থন করার জন্য গেন্ডারমেস এবং সামরিক বাহিনীকে পোর্ট-জেন্টিলে মোতায়েন করা হয়েছিল এবং তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে কারফিউ কার্যকর ছিল।Background note: Gabon . ২০১০ সালের জুন মাসে একটি আংশিক আইনসভা উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দলগুলির একটি নবগঠিত জোট ইউনিয়ন ন্যাশনাল (ইউএন) প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেছিল। ইউএন মূলত পিডিজি দলত্যাগীদের নিয়ে গঠিত, যারা ওমর বঙ্গোর মৃত্যুর পরে দল ছেড়ে চলে যায়। পাঁচটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনের মধ্যে, পিডিজি তিনটি এবং ইউএন দুটি জিতেছিল; উভয় পক্ষই জয় দাবি করেছিল।Background note: Gabon . ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে, রাষ্ট্রপতি আলী বঙ্গোর বিরুদ্ধে সৈন্যদের নেতৃত্বে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছিল; অভ্যুত্থান শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। সরকার এবং রাজনীতি থাম্ব|২০১৪ সালে গ্যাবোনীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি আলী বঙ্গো ওনডিম্বা ও তার স্ত্রী সিলভিয়া বঙ্গো ওনডিম্বা এবং মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামা ও তার স্ত্রী মিশেল ওবামা গ্যাবন হল একটি প্রজাতন্ত্র যার ১৯৬১ সালের সংবিধানের অধীনে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা রয়েছে (১৯৭৫ সালে সংশোধিত, ১৯৯১ সালে পুনর্লিখিত এবং ২০০৩ সালে সংশোধিত)। রাষ্ট্রপতি সাত বছরের মেয়াদের জন্য সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত হন; ২০০৩ সালের একটি সাংবিধানিক সংশোধনী রাষ্ট্রপতির মেয়াদের সীমা অপসারণ করে এবং আজীবন রাষ্ট্রপতি পদের সুবিধা দেয়। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভা এবং স্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগ ও বরখাস্ত করতে পারেন। রাষ্ট্রপতির অন্যান্য শক্তিশালী ক্ষমতাও রয়েছে, যেমন জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা, আইন প্রণয়নে বিলম্ব এবং গণভোট পরিচালনা করা।Background note: Gabon . গ্যাবনের একটি জাতীয় পরিষদ এবং সিনেট সহ একটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা রয়েছে। জাতীয় পরিষদে ১২০ জন ডেপুটি রয়েছেন যারা ৫ বছরের মেয়াদে জনপ্রিয়ভাবে নির্বাচিত হন। সিনেট ১০২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত যারা পৌর পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদ দ্বারা নির্বাচিত হয় এবং ৬ বছরের জন্য কাজ করে। ১৯৯০-১৯৯১ সালের সাংবিধানিক সংশোধনে সিনেট তৈরি করা হয়েছিল, যদিও ১৯৯৭ সালের স্থানীয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এটি কার্যকর করা হয়নি। সিনেটের সভাপতি রাষ্ট্রপতির পরবর্তী অবস্থানে রয়েছেন।Background note: Gabon . গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও, ফ্রিডম ইন ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে গ্যাবনকে "মুক্ত নয়" হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে এবং ২০১৬ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ১৯৯০ সালে, সরকার গ্যাবনের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনে। ১৯৯০ সালের মে মাসে মার্চ-এপ্রিলের জাতীয় রাজনৈতিক সম্মেলনের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধানের খসড়া তৈরি করা হয়েছিল এবং পরে একটি সাংবিধানিক কমিটি দ্বারা সংশোধন করা হয়েছিল। এর বিধানগুলির মধ্যে ছিল একটি পাশ্চাত্য-শৈলীর অধিকারের বিল, সেই অধিকারগুলির নিশ্চয়তা তত্ত্বাবধানের জন্য একটি জাতীয় গণতন্ত্র কাউন্সিল গঠন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ে একটি সরকারি উপদেষ্টা বোর্ড এবং একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ গঠিত করা হয়।Background note: Gabon . জাতীয় পরিষদ, পিডিজি কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর, ১৯৯১ সালের মার্চ মাসে পরিষদের সর্বসম্মতিক্রমে সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। বিরোধী দলগুলিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধ ঘোষণা করা না হওয়া সত্ত্বেও ১৯৯০-৯১ সালে বহুদলীয় আইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, নির্বাচনে প্রথম প্রতিনিধিত্বমূলক বহুদলীয় জাতীয় পরিষদ তৈরি হয়েছিল। ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে, পরিষদ সর্বসম্মত ভোটে বিরোধী দলগুলির বৈধকরণকে নিয়ন্ত্রণ করে একটি আইন পাস করেছিল।Background note: Gabon . ১৯৯৩ সালে রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর, একটি বিতর্কিত নির্বাচনে যেখানে মাত্র ৫১% ভোট পড়েছিল, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ১৯৯৪ সালের প্যারিস সম্মেলন এবং চুক্তি হয়েছিল। এগুলো পরবর্তী নির্বাচনের জন্য একটি কাঠামো প্রদান করেছিল। স্থানীয় ও আইনসভা নির্বাচন ১৯৯৬-৯৭ সাল পর্যন্ত বিলম্বিত হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে, সিনেট এবং উপরাষ্ট্রপতির পদ তৈরি করার পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য কয়েক বছর আগে পেশ করা সাংবিধানিক সংশোধনী গৃহীত হয়েছিল।Background note: Gabon . ২০০৯ সালের অক্টোবরে, নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি আলী বঙ্গো ওনডিম্বা সরকারকে সুশৃঙ্খল করার প্রচেষ্টা শুরু করেন। দুর্নীতি ও সরকারের স্ফীতি কমানোর প্রচেষ্টায় তিনি ১৭টি মন্ত্রী পর্যায়ের পদ বাতিল করেন, উপরাষ্ট্রপতির পদ বিলুপ্ত করেন এবং অসংখ্য মন্ত্রণালয়, ব্যুরো ও অধিদপ্তরের দফতর পুনর্গঠন করেন। ২০০৯ সালের নভেম্বরে, রাষ্ট্রপতি বোঙ্গো ওনডিম্বা গ্যাবনের আধুনিকীকরণের জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ঘোষণা করেন, যার নাম "গ্যাবন উত্থানশীল"। এই কর্মসূচিতে তিনটি স্তম্ভ রয়েছে: সবুজ গ্যাবন, পরিষেবা গ্যাবন এবং শিল্প গ্যাবন। গ্যাবন উত্থানশীলের লক্ষ্য হল অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনা যাতে গ্যাবন পেট্রোলিয়ামের উপর কম নির্ভরশীল হয়, দুর্নীতি দূর করা যায় এবং কর্মশক্তিকে আধুনিক করা যায়। এই কর্মসূচির অধীনে কাঁচা কাঠের রপ্তানি নিষিদ্ধ, একটি সরকার-ব্যাপী আদমশুমারি অনুষ্ঠিত, একটি দীর্ঘ মধ্যাহ্ন বিরতি দূর করতে কাজের দিন পরিবর্তন এবং একটি জাতীয় তেল কোম্পানি তৈরি করা হয়েছিল।Background note: Gabon . অস্থায়ী ফলাফলে, ক্ষমতাসীন গ্যাবোনিজ ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিজি) ১২০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৮৪টিতে জয়ী হয়েছিল। ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি, বিরোধী দলীয় নেতা আন্দ্রে ইম্বা ওবামে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার দাবি করে বলেছিলেন, যে দেশটি এমন একজনের দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত যা জনগণ সত্যিই চেয়েছিল। তিনি তার সরকারের জন্য ১৯ জন মন্ত্রীকে বেছেও নিয়েছিলেন এবং পুরো দলটি আরও কয়েকশ জনের সাথে জাতিসংঘের সদর দফতরে রাত কাটিয়েছিল। ২৬শে জানুয়ারি, সরকার এমবা ওবামের দল ভেঙে দেয়। এউ চেয়ারম্যান জিন পিং বলেছেন যে, এমবা ওবামের পদক্ষেপ "বিধিসম্মত প্রতিষ্ঠানের অখণ্ডতাকে আঘাত করে এবং গ্যাবনের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকেও বিপন্ন করে।" স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-ফ্রাঁসোয়া এনডংউ এমবা ওবামে এবং তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনেছিলেন। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেছিলেন যে তিনি ওনডিম্বাকে একমাত্র সরকারি গ্যাবোনীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।] ২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন খুব ঘনিষ্ঠ সরকারি ফলাফল নিয়ে বিতর্কিত ছিল। রাজধানীতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং একটি নৃশংস দমন-পীড়নের মুখোমুখি হয় যা রাষ্ট্রপতির প্রহরী দ্বারা বিরোধী দলের সদর দফতরে কথিত বোমা হামলার মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৫০ থেকে ১০০ জন নাগরিক নিহত এবং ১,০০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা কিছু জেলায় অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ ভোটদানের খবর সহ অনিয়মের সমালোচনা করেছেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত কিছু সন্দেহভাজন এলাকাকে নিষ্কাশিত করেছিল কিন্তু ব্যালট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পূর্ণ গণনা সম্ভব হয়নি। ক্ষমতাসীন ওনডিম্বার পক্ষে নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছিল। ইউরোপীয় সংসদ নির্বাচনের অস্পষ্ট ফলাফলের নিন্দা জানিয়ে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়ে ২টি প্রস্তাব জারি করেছিল। বৈদেশিক সম্পর্ক থাম্ব|২০১৯ সালের অক্টোবরে সোচিতে রাশিয়া-আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনে গ্যাবনের প্রধানমন্ত্রী জুলিয়েন এনকোগে বেকেলে এবং রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন স্বাধীনতার পর থেকে, গ্যাবন একটি অ-সংহত নীতি অনুসরণ করেছে, আন্তর্জাতিক বিষয়ে সংলাপের পক্ষে এবং বিভক্ত দেশগুলির প্রতিটি পক্ষকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আন্তঃ-আফ্রিকান বিষয়গুলিতে, গ্যাবন বিপ্লবের পরিবর্তে বিবর্তনের মাধ্যমে উন্নয়নকে সমর্থন করে এবং দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উন্নীতের জন্য সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় ব্যবস্থা হিসাবে নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিগত উদ্যোগকে সমর্থন করে। গ্যাবন চাদ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, অ্যাঙ্গোলা, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো (ডিআরসি) এবং বুরুন্ডিতে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় জড়িত থাকার মাধ্যমে মধ্য আফ্রিকার স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছিল। ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে, রাষ্ট্রপতি বঙ্গোর মধ্যস্থতার প্রচেষ্টার মাধ্যমে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ব্রাজাভিল) সরকার এবং সশস্ত্র বিদ্রোহের বেশিরভাগ নেতাদের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি বঙ্গো অব্যাহত ডি.আর.সি শান্তি প্রক্রিয়ার সাথেও জড়িত ছিলেন এবং আইভরি কোস্টের সংকটের মধ্যস্থতায় ভূমিকা রেখেছিলেন। গ্যাবোনীয় সশস্ত্র বাহিনী কেন্দ্রীয় আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে সেন্ট্রাল আফ্রিকান ইকোনমিক অ্যান্ড মানিটারি কমিউনিটি (সিইএমসি) মিশনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। থাম্ব|মার্কিন নৌবাহিনীর ক্যাপ্টেনকে গ্যাবোনীয় আর্মি অভ্যর্থনা জানাচ্ছে গ্যাবন জাতিসংঘ (ইউএন) এবং এর কিছু বিশেষায়িত এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক; আইএমএফ; আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ); সেন্ট্রাল আফ্রিকান কাস্টমস ইউনিয়ন/সেন্ট্রাল আফ্রিকান ইকোনমিক অ্যান্ড মনিটারি কমিউনিটি (ইউডিএসি/সিইএমসি); লোমে কনভেনশনের অধীনে ইইউ/এসিপি অ্যাসোসিয়েশন; কমিনাউতে ফিনান্সিয়েরে আফিকাইনে (সিএফএ); ইসলামী সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি); জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন; এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান স্টেটসের অর্থনৈতিক সম্প্রদায় (ইসিসিএএস/সিইইএসি)-এর সদস্য। ১৯৯৫ সালে, গ্যাবন পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলির সংস্থা (ওপেক) থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেছিল, আবার ২০১৬ সালে পুনরায় যোগদান করে। গ্যাবন ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি অস্থায়ী আসনে নির্বাচিত হয়েছিল এবং ২০১০ সালের মার্চে আবর্তিত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিল।Background note: Gabon . সামরিক গ্যাবনে প্রায় ৫,০০০ জন সদস্যের একটি ছোট, পেশাদার সামরিক বাহিনী রয়েছে, যা সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, জেন্ডারমেরি এবং পুলিশ বাহিনীতে বিভক্ত। ১,৮০০ সদস্যের একটি রক্ষীবাহিনী রাষ্ট্রপতিকে নিরাপত্তা প্রদান করে।Background note: Gabon . প্রশাসনিক বিভাগ গ্যাবন নয়টি প্রদেশে বিভক্ত, যা আরও ৫০টি বিভাগে বিভক্ত। রাষ্ট্রপতি প্রাদেশিক গভর্নর, বৈনয়িক এবং উপবৈনয়িকদের নিয়োগ করেন।Background note: Gabon . প্রদেশগুলি হল (বন্ধনীতে রাজধানী): এস্টুয়ায়ার (লিব্রেভিল) হাউট-ওগুই (ফ্রান্সভিল) মোয়েন-ওগুই (ল্যাম্বারেনে) এনগোউনিয়ে (মৌইলা) নায়াঙ্গা (চিবাঙ্গা) ওগুই-ইভিন্দো (মাকোকু) ওগুই-লোলো (কৌলামৌতু) ওগুই-মেরিটাইম (পোর্ট-জেন্টিল) ওলেউ-নটেম (ওয়েম) ভূগোল থাম্ব|কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিভাগের গ্যাবন মানচিত্র থাম্ব|গ্যাবনের সমুদ্র সৈকতের দৃশ্য গ্যাবন মধ্য আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূলে বিষুবরেখায় ৩°উত্তর এবং ৪°দক্ষিণ অক্ষাংশ এবং ৮° এবং ১৫°পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। গ্যাবনের ঘনবর্ষণ বনাঞ্চল নিয়ে সাধারণত একটি নিরক্ষীয় জলবায়ু রয়েছে, যার ৮৯.৩% ভূমি বনে পরিণত। তিনটি স্বতন্ত্র অঞ্চল রয়েছে: উপকূলীয় সমভূমি ( এর মধ্যে সমুদ্রের তীর থেকে), পর্বত (লিব্রেভিলের উত্তর-পূর্বে ক্রিস্টাল পর্বতমালা, কেন্দ্রে চাইলু ম্যাসিফ) এবং পূর্বে সাভানা। উপকূলীয় সমভূমিগুলি বিশ্ব বন্যপ্রাণী তহবিলের আটলান্টিক নিরক্ষীয় উপকূলীয় বন ইকোরিজিয়নের একটি বৃহৎ অংশ গঠন করে এবং এতে মধ্য আফ্রিকার ম্যানগ্রোভের প্যাচ রয়েছে বিশেষ করে নিরক্ষীয় গিনির সীমান্তে মুনি নদীর মোহনায়। ভূতাত্ত্বিকভাবে, গ্যাবন প্রাথমিকভাবে প্রাচীন আর্কিয়ান এবং প্যালিওপ্রোটেরোজোইক আগ্নেয় এবং রূপান্তরিত বেসমেন্ট শিলা, কঙ্গো ক্র্যাটনের স্থিতিশীল মহাদেশীয় ভূত্বকের অন্তর্গত, যা অত্যন্ত পুরানো মহাদেশীয় ভূত্বকের একটি অবশিষ্টাংশ। কিছু গঠন দুই বিলিয়ন বছরেরও বেশি পুরানো। প্রাচীন শিলা এককগুলি সামুদ্রিক কার্বনেট, ল্যাকস্ট্রাইন ও মহাদেশীয় পাললিক শিলা এবং সেইসাথে অসংহত পলল ও মৃত্তিকা দ্বারা আবৃত রয়েছে যা কোয়াটারনারির শেষ ২.৫ মিলিয়ন বছরে গঠিত হয়েছিল। অতিমহাদেশ প্যানজিয়ার বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে ফাটল অববাহিকা তৈরি হয়েছিল যা পলিতে ভরা এবং হাইড্রোকার্বন গঠন করেছে যা বর্তমানে গ্যাবোনিজ অর্থনীতির মূল পাথর। গ্যাবন ওকলো চুল্লি অঞ্চলের জন্য উল্লেখযোগ্য, পৃথিবীর একমাত্র পরিচিত প্রাকৃতিক পারমাণবিক বিদারণ চুল্লি যা দুই বিলিয়ন বছর আগে সক্রিয় ছিল। ফরাসি পারমাণবিক শক্তি শিল্পে সরবরাহ করার জন্য ১৯৭০-এর দশকে ইউরেনিয়াম খনিতে কাজের সময় স্থানটি আবিষ্কৃত হয়েছিল। গ্যাবনের বৃহত্তম নদী হল ওগুই যা দীর্ঘ। গ্যাবনের তিনটি কার্স্ট এলাকা রয়েছে যেখানে ডলোমাইট এবং চুনাপাথরের শিলাগুলির মধ্যে শত শত গুহা রয়েছে। কিছু গুহার মধ্যে রয়েছে গ্রোটে ডু লাস্টোরসভিল, গ্রোটে ডু লেবাম্বা, গ্রোটে ডু বোঙ্গোলো এবং গ্রোটে ডু কেসিপুগু। অনেক গুহা এখনো অনুসন্ধান করা হয়নি। ২০০৮ সালের গ্রীষ্মে একটি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক অভিযানে সেগুলোক নথিভুক্ত করার জন্য গুহাগুলি পরিদর্শন করেছিল। গ্যাবন প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টার জন্যও বিখ্যাত। ২০০২ সালে, রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো ওনডিম্বা দেশের ভূখণ্ডের প্রায় ১০%-কে এর জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থার অংশ হিসাবে মনোনীত করেছিলেন (মোট ১৩টি পার্ক সহ), যা বিশ্বের প্রকৃতি পার্কল্যান্ডের বৃহত্তম অনুপাতগুলির মধ্যে অন্যতম। ন্যাশনাল এজেন্সি ফর ন্যাশনাল পার্ক গ্যাবনের জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থা পরিচালনা করে। ২০১৮ সালে বনের প্রাকৃতিক ভূদৃশ্য অখণ্ডতা সূচকে গ্যাবনের গড় স্কোর ছিল ৯.০৭/১০, এটি ১৭২টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৯ম স্থানে রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে পেট্রোলিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, সোনা, ইউরেনিয়াম এবং বন। অর্থনীতি ডান|থাম্ব|গ্যাবনের রপ্তানির আনুপাতিক চিত্র, ২০১৯ থাম্ব|গ্যাবনের মাথাপিছু জিডিপিতে পরিবর্তন, ১৯৫০-২০১৮ সালের পরিসংখ্যানে ২০১১ সালের আন্তর্জাতিক ডলারের সাথে মুদ্রাস্ফীতি-সামঞ্জস্য করা হয়েছে। গ্যাবনের অর্থনীতিতে তেলের আধিপত্য রয়েছে। তেল রাজস্ব সরকারের বাজেটের প্রায় ৪৬%, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪৩% এবং রপ্তানির ৮১%। ১৯৯৭ সালে প্রতিদিন ৩৭০,০০০ ব্যারেলের উচ্চ বিন্দু থেকে তেল উৎপাদন বর্তমানে দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। কিছু অনুমান ইঙ্গিত দেয় যে, গ্যাবোনীয় তেল ২০২৫ সালের মধ্যে ব্যয় করা হবে। তেলের আয় কমে যাওয়া সত্ত্বেও, তেল-পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য পরিকল্পনা বর্তমানে শুরু হচ্ছে।Background note: Gabon . গ্রোন্ডিন অয়েল ফিল্ড ১৯৭১ সালে উপকূলে পানির গভীরতায় আবিষ্কৃত হয় এবং মাস্ট্রিচিয়ান যুগের বাটাঙ্গা বেলেপাথর থেকে উৎপন্ন হয়ে একটি অ্যান্টিলাইন লবণ কাঠামোগত ফাঁদ তৈরি করে যা প্রায় গভীর।Vidal, J., "Geology of Grondin Field, 1980", in Giant Oil and Gas Fields of the Decade: 1968–1978, AAPG Memoir 30, Halbouty, M.T., editor, Tulsa: American Association of Petroleum Geologists, , pp. 577–590 উল্লেখযোগ্য তেল রাজস্বের বছর থেকে গ্যাবোনীয় সরকারি খরচ দক্ষতার সাথে ব্যয় করা হয়নি। ট্রান্স-গ্যাবন রেলওয়েতে অতিরিক্ত ব্যয়, ১৯৯৪ সালের সিএফএ ফ্রাঙ্কের অবমূল্যায়ন, এবং তেলের কম দামের সময়কালের কারণে গুরুতর ঋণ সমস্যা তৈরি হয়েছিল যেগুলোতে এখনও দেশটি জর্জরিত।Background note: Gabon . গ্যাবন প্যারিস ক্লাব ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর ঋণ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনার জন্য সামান্য খ্যাতি অর্জন করেছে। আইএমএফ মিশন অফ-বাজেট আইটেমগুলিতে (ভাল এবং খারাপ বছরগুলিতে) অতিরিক্ত ব্যয় করা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ঋণ নেওয়া ও বেসরকারীকরণ এবং প্রশাসনিক সংস্কারের সময়সূচীতে স্খলনের জন্য ক্রমাগত সরকারের সমালোচনা করেছে। যাইহোক, ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে গ্যাবন সফলভাবে আইএমএফ এর সাথে ১৫ মাসের স্ট্যান্ড-বাই ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছিল। ২০০৭ সালের মে মাসে আইএমএফ-এর সাথে আরেকটি ৩ বছরের স্ট্যান্ড-বাই ব্যবস্থা অনুমোদিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গোর মৃত্যু ও নির্বাচনকে ঘিরে আর্থিক সংকট এবং সামাজিক উন্নয়নের কারণে গ্যাবন ২০০৯ সালে স্ট্যান্ড-বাই ব্যবস্থার অধীনে এর অর্থনৈতিক লক্ষ্যগুলি পূরণ করতে পারেনি। আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা চলমান ছিল।Background note: Gabon . গ্যাবনের তেল রাজস্ব এই অঞ্চলের জন্য এটিকে অস্বাভাবিকভাবে বেশি ৮,৬০০ মার্কিন ডলারের মাথাপিছু জিডিপি দিয়েছে। তবে, একটি তির্যক আয় বন্টন এবং দুর্বল সামাজিক সূচকগুলি স্পষ্ট। জনসংখ্যার সবচেয়ে ধনী ২০% লোক আয়ের ৯০% এর বেশি উপার্জন করে যদিও গ্যাবোনীয় জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করে।Background note: Gabon . অর্থনীতি নিষ্কাশনের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল, তবে প্রাথমিক উপকরণ প্রচুর রয়েছে। তেল আবিষ্কারের আগে লগিং গ্যাবোনীয় অর্থনীতির স্তম্ভ ছিল। বর্তমানে লগিং এবং ম্যাঙ্গানিজ খনন পরবর্তী-সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আয় উৎপাদকে রূপ নিয়েছে। সাম্প্রতিক অনুসন্ধানগুলি বিশ্বের বৃহত্তম অপ্রয়োগিত লৌহ আকরিক স্তরের উপস্থিতির পরামর্শ দেয়। নিষ্কাশন শিল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ ছাড়াই গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী অনেকের জন্য শহুরে এলাকার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স বা জীবিকা নির্বাহের কার্যক্রমে আয়ের জোগান দেয়।Background note: Gabon . বিদেশী এবং স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা গ্যাবোনীয় অর্থনীতিতে বৈচিত্র্যের অভাবের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন কারণ এখন পর্যন্ত নতুন শিল্পের বিকাশকে সীমিত করেছে: বাজার ছোট, প্রায় এক মিলিয়ন ফ্রান্স থেকে আমদানির উপর নির্ভরশীল আঞ্চলিক বাজারে পুঁজি করতে অক্ষম গ্যাবোনীয়দের মধ্যে উদ্যোক্তা উদ্দীপনা সবসময় থাকে না তেলের "ভাড়া" একটি মোটামুটি নিয়মিত প্রবাহ, এমনকি যদি এটি হ্রাস পায় কৃষি বা পর্যটন খাতে আরও বিনিয়োগ দুর্বল অবকাঠামোর কারণে জটিল হয়ে পড়েছে। ক্ষুদ্র প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং পরিষেবা খাত যেগুলি বিদ্যমান রয়েছে সেগুলি মূলত কয়েকজন বিশিষ্ট স্থানীয় বিনিয়োগকারীর দ্বারা প্রভাবিত।Background note: Gabon . বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের অনুরোধে, সরকার ১৯৯০-এর দশকে এর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলির বেসরকারীকরণ ও সরকারী খাতের কর্মসংস্থান এবং বেতন বৃদ্ধি সহ প্রশাসনিক সংস্কারের একটি কর্মসূচি শুরু করেছিল, কিন্তু অগ্রগতি ধীর ছিল। নতুন সরকার দেশের একটি অর্থনৈতিক রূপান্তরের দিকে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কিন্তু এই লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে।Background note: Gabon . জনসংখ্যা +গ্যাবনের জনসংখ্যা বছরমিলিয়ন১৯৫০০.৫২০০০১.২ থাম্ব|গ্যাবনের সৈকতে ভিড় গ্যাবনের জনসংখ্যা প্রায় ২.১ মিলিয়ন। ঐতিহাসিক এবং পরিবেশগত কারণে ১৯০০ ও ১৯৪০ সালের মধ্যে গ্যাবনের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল। গ্যাবনে আফ্রিকার যেকোনো দেশের চেয়ে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে কম,Background note: Gabon . এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার মানব উন্নয়ন সূচকে চতুর্থ সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। জাতিগোষ্ঠী প্রায় সব গ্যাবোনীয় বান্টু বংশোদ্ভূত। গ্যাবনে বিভিন্ন ভাষা এবং সংস্কৃতি নিয়ে অন্তত চল্লিশটি জাতিগত গোষ্ঠী রয়েছে।Background note: Gabon . যাদের মধ্যে রয়েছে ফ্যাং, মাইনে, পুনু-ইচিরা, এনজেবি - আদুমা, টেকে-মবেতে, মেম্বে, কোটা, আকেল। এছাড়াও বিভিন্ন আদিবাসী পিগমি জাতি রয়েছে: বঙ্গো এবং বাকা। পরেরটি গ্যাবনে একমাত্র অ-বান্টু ভাষায় কথা বলে। প্রায় ২,০০০ জন দ্বৈত নাগরিক সহ ১০,০০০ জনেরও বেশি স্থানীয় ফরাসিরা গ্যাবনে বসবাস করে। আফ্রিকার অন্য জায়গার তুলনায় গ্যাবনে জাতিগত সীমানা কম তীব্রভাবে টানা হয়েছে। বেশিরভাগ জাতিসত্তা গ্যাবন জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে, যার ফলে গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ক্রমাগত যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়া হয় এবং কোনও জাতিগত উত্তেজনা নেই। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল আন্তঃবিবাহ অত্যন্ত সাধারণ এবং প্রত্যেক গ্যাবোনীয় ব্যক্তি রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন উপজাতির সাথে যুক্ত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, আন্তঃবিবাহের প্রায়ই প্রয়োজন হয় কারণ অনেক উপজাতির মধ্যে একই গোত্রের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল কারণ এটি অজাচার হিসাবে বিবেচিত হয়। এর কারণ হল এই উপজাতিগুলি একটি নির্দিষ্ট পূর্বপুরুষের বংশধরদের নিয়ে গঠিত, এবং সেইজন্য উপজাতির সব সদস্য একে অপরের নিকটাত্মীয় হিসাবে বিবেচিত হয়। ফরাসি ভাষা এর প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শাসকের একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তি। গ্যাবন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিজি) এর ঐতিহাসিক আধিপত্য বিভিন্ন জাতিসত্তা এবং স্থানীয় স্বার্থকে একটি বৃহত্তর সমগ্রের মধ্যে একত্রিত করার জন্য কাজ করেছে। জনসংখ্যা কেন্দ্র থাম্ব|লিব্রেভিল থাম্ব|লিব্রেভিলে লোকজন +গ্যাবন শহরক্রম শহরজনসংখ্যাপ্রদেশ২০০৩ সালের আদমশুমারি২০১৩ সালের আদমশুমারি১.লিব্রেভিল৫৩৮,১৯৫ ৭০৩,৯৪০ এস্টুয়ায়ার২.পোর্ট-জেন্টিল১০৫,৭১২১৩৬,৪৬২ওগুই-মেরিটাইম৩.ফ্রান্সভিল১০৩,৮৪০ ১১০,৫৬৮হাউত-ওগুই৪.ওভেন্ডো৫১,৬৬১৭৯,৩০০এস্টুয়ায়ার৫.ওয়েম৩৫,২৪১৬০,৬৮৫ওউলেউ-এনতেম৬.মোয়ান্ডা৪২,৭০৩৫৯,১৫৪হাউত-ওগুই৭.এনতাউম১২,৭১১৫১,৯৫৪এস্টুয়ায়ার৮.ল্যাম্বারেনে২৪,৮৮৩৩৮,৭৭৫ময়েন-ওগুই৯.মৌইলা২১,৭০৪ ৩৬,০৬১এনগোউনি১০.আকন্দ -৩৪,৫৪৮আকন্দ ভাষা ফরাসি দেশটির একমাত্র সরকারি ভাষা। এটি ধারণা করা হয়েছে যে, গ্যাবনের জনসংখ্যার ৮০% ফরাসি বলতে পারে, এবং লিব্রেভিলের বাসিন্দাদের ৩০% এই ভাষার স্থানীয় ভাষাভাষী। জাতীয়ভাবে, গ্যাবনের লোকেরা তাদের জাতিগত গোষ্ঠী অনুসারে তাদের বিভিন্ন মাতৃভাষায় কথা বলে। ২০১৩ সালের আদমশুমারিতে দেখা গেছে যে গ্যাবনের জনসংখ্যার মাত্র ৬৩.৭% একটি গ্যাবোনীয় ভাষায় কথা বলতে পারে, গ্রামীণ এলাকায় ৮৬.৩% এবং শহরাঞ্চলে ৬০.৫% অন্তত একটি জাতীয় ভাষায় কথা বলে। ২০১২ সালের অক্টোবরে, অর্গানাইজেশন ইন্টারন্যাশনাল দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির ১৪তম শীর্ষ সম্মেলনের ঠিক আগে, দেশটি আফ্রিকান দেশে দুর্নীতির বিষয়ে ফ্রান্সের তদন্তের প্রতিক্রিয়ায় ইংরেজিকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষা হিসাবে যুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল, যদিও একজন সরকারি মুখপাত্র জোর দিয়েছিলেন যে, এটি কেবল ব্যবহারিক কারণে ছিল। পরে এটি স্পষ্ট করা হয়েছিল যে দেশটি বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম বিদেশী ভাষা হিসাবে ইংরেজি চালু করতে চেয়েছিল, যখন ফরাসি ভাষাকে শিক্ষার সাধারণ মাধ্যম এবং একমাত্র সরকারি ভাষা হিসাবে রাখা হয়েছিল। ধর্ম গ্যাবনে প্রচলিত প্রধান ধর্মের মধ্যে রয়েছে খ্রিস্টান ধর্ম (রোমান ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্টবাদ), বিউইটি, ইসলাম এবং আদিবাসী অ্যানিমিস্টিক ধর্ম।International Religious Freedom Report 2007: Gabon . অনেক ব্যক্তি খ্রিস্টধর্ম এবং ঐতিহ্যগত আদিবাসী ধর্মীয় বিশ্বাস উভয়ের উপাদানের অনুশীলন করে। প্রায় ৭৩ শতাংশ বাসিন্দা খ্রিস্টধর্মের কমপক্ষে কিছু উপাদান অনুশীলন করে, যার মধ্যে সমন্বয়বাদী বিউইটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; ১২ শতাংশ ইসলাম ধর্ম পালন করে; ১০ শতাংশ শুধু ঐতিহ্যগত আদিবাসী ধর্মীয় বিশ্বাস অনুশীলন করে; আর ৫ শতাংশ ধর্ম পালন করে না বা নাস্তিক। ট্যাবু এবং জাদুর একটি প্রাণবন্ত বর্ণনা শোয়েটজার দ্বারা প্রদান করা হয়েছে।Schweitzer, Albert. 1958. স্বাস্থ্য গ্যাবনের বেশিরভাগ স্বাস্থ্যসেবা সরকারি, তবে কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত হল ১৯১৩ সালে অ্যালবার্ট শোয়েটজার দ্বারা ল্যাম্বারেনেতে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতাল। গ্যাবনের চিকিৎসা পরিকাঠামোকে পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম সেরা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।] ১৯৮৫ সালের মধ্যে ২৮টি হাসপাতাল, ৮৭টি চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ৩১২টি ইনফার্মারি ও ঔষধালয় ছিল।, প্রতি ১০০,০০০ জন লোকের মধ্যে প্রায় ২৯ জন চিকিৎসক ছিলেন এবং জনসংখ্যার প্রায় ৯০% স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবায় প্রবেশ করেছিল। ২০০০ সালে, জনসংখ্যার ৭০% নিরাপদ পানি এবং ২১% পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ছিল। একটি ব্যাপক সরকারি স্বাস্থ্য কর্মসূচি কুষ্ঠ, ঘুমের অসুস্থতা, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়াসিস, অন্ত্রের কৃমি এবং যক্ষ্মার মতো রোগের চিকিৎসা করে। এক বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার হার ছিল যক্ষ্মা রোগের জন্য ৯৭% এবং পোলিওর জন্য ৬৫%। ডিপিটি এবং হামের জন্য টিকা দেওয়ার হার ছিল যথাক্রমে ৩৭% এবং ৫৬%। গ্যাবনে লিব্রেভিলের একটি কারখানা থেকে ওষুধের অভ্যন্তরীণ সরবরাহ রয়েছে। মোট উর্বরতার হার ১৯৬০ সালে ৫.৮ থেকে ২০০০ সালে সন্তানপ্রসবের সময় মা প্রতি ৪.২ জন শিশুতে হ্রাস পেয়েছে। জন্মের ১০ শতাংশই ছিল কম ওজনের। ১৯৯৮ সালের হিসাবে প্রতি ১০০,০০০ জীবিত জন্মে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৫২০। ২০০৫ সালে, শিশু মৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০ জন জীবিত জন্মে ৫৫.৩৫ এবং আয়ু ছিল ৫৫.০২ বছর। ২০০২ সালের হিসাবে, সামগ্রিক মৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০ জন বাসিন্দার মধ্যে ১৭.৬ জন ছিল বলে ধারণা করা হয়েছিল। ধারণা করা হয় এইচআইভি/এইডসের প্রাদুর্ভাব প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৫.২% (১৫-৪৯ বছর বয়সী)। , প্রায় ৪৬,০০০ মানুষ এইচআইভি/এইডস নিয়ে বসবাস করছিল। ২০০৯ সালে এইডসে প্রায় ২,৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল - যা ২০০৩ সালে ৩,০০০ মৃত্যুর চেয়ে কম ছিল। শিক্ষা গ্যাবনের শিক্ষা ব্যবস্থা দুটি মন্ত্রণালয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়: শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সর্বশেষ বিদ্যালয় শ্রেণির মাধ্যমে প্রাক-কিন্ডারগার্টেনের দায়িত্ব এবং উচ্চ শিক্ষা ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চ শিক্ষা এবং পেশাদার বিদ্যালয়ের দায়িত্ব। শিক্ষা আইনের অধীনে ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক। গ্যাবনের বেশিরভাগ শিশু নার্সারি বা "ক্রেচে" অংশ নিয়ে তাদের বিদ্যালয় জীবন শুরু করে, তারপর কিন্ডারগার্টেন যা "জার্ডিন ডি'এনফ্যান্টস" নামে পরিচিত। ছয় বছর বয়সে, তারা প্রাথমিক বিদ্যালয় "ইকোলে প্রাইমারি"-তে ভর্তি হয় যা ছয়টি শ্রেণি নিয়ে গঠিত। পরবর্তী স্তরটি হল "ইকোলে সেকেন্ডারি", যা সাতটি শ্রেণি নিয়ে গঠিত। পরিকল্পিত স্নাতক বয়স ১৯ বছর। যারা স্নাতক শেষ করে তারা প্রকৌশল বিদ্যালয় বা ব্যবসায় বিদ্যালয় সহ উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারে। ২০১২ সালের হিসাবে গ্যাবনে, ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার ছিল ৮২%। সরকার বিদ্যালয় নির্মাণ, শিক্ষকদের বেতন প্রদান এবং গ্রামীণ এলাকায় সহ শিক্ষার প্রচারের জন্য তেলের রাজস্ব ব্যবহার করেছে। তবে বিদ্যালয়ের কাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি শিক্ষকদের বেতনও কমেছে। ২০০২ সালে স্থূল প্রাথমিক তালিকাভুক্তির হার ছিল ১৩২ শতাংশ এবং ২০০০ সালে নিট প্রাথমিক তালিকাভুক্তির হার ছিল ৭৮ শতাংশ। স্থূল এবং নেট তালিকাভুক্তির অনুপাত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এবং তাই প্রকৃত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি প্রতিফলিত করে না। ২০০১ সালের হিসাবে, প্রাথমিক বিদ্যালয় শুরু করা ৬৯ শতাংশ শিশু পঞ্চম শ্রেণিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ছিল। শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা, তদারকির অভাব, দুর্বল যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক এবং জনাকীর্ণ শ্রেণীকক্ষ।"Gabon". 2005 Findings on the Worst Forms of Child Labor . সংস্কৃতি থাম্ব|একটি গ্যাবোনীয় মুখোশ একবিংশ শতাব্দীতে সাক্ষরতার বিস্তার না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে মৌখিক ঐতিহ্যের সাথে একটি দেশ গ্যাবন লোককাহিনী এবং পৌরাণিক কাহিনীতে সমৃদ্ধ। "রাকোনটিয়ারা" বর্তমানে ঐতিহ্যগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কাজ করছে যেমন ফ্যাংদের মধ্যে মভেট এবং এনজেবিদের মধ্যে ইংওয়ালা। গ্যাবনে আন্তর্জাতিকভাবে সুপ্রসিদ্ধ মুখোশও রয়েছে, যেমন এন'গোলটাং (ফ্যাং) এবং কোটা -এর স্মৃতিচিহ্নের আধারের পরিসংখ্যান। প্রতিটি গ্রুপের নিজস্ব মাস্ক রয়েছে যা বিভিন্ন কারণে ব্যবহৃত হয়।এগুলি বেশিরভাগ ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান যেমন বিবাহ, জন্ম এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে ব্যবহৃত হয়।ঐতিহ্যবাদীরা প্রধানত বিরল স্থানীয় কাঠ এবং অন্যান্য মূল্যবান উপকরণ নিয়ে কাজ করে। সঙ্গীত গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র এবং ক্যামেরুনের মতো আঞ্চলিক অতিকায়দের তুলনায় গ্যাবোনীয় সঙ্গীত কম পরিচিত। দেশটিতে গর্ব করার মতো লোক শৈলীর বিন্যাস রয়েছে, সেইসাথে গ্যাবোনীয় গায়িকা ও বিখ্যাত সরাসরি পারফর্মার পেশেন্স দাবানি এবং অ্যানি-ফ্লোর ব্যাচিলিলিসের মতো পপ তারকারাও রয়েছেন। এছাড়াও পরিচিত গিটারবাদকদের মধ্যে রয়েছেন জর্জেস ওয়েন্ডজে, লা রোজ এমবাডু ও সিলভাইন আভারা এবং গায়ক অলিভার এন'গোমা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা রক এবং হিপ হপ গ্যাবনে জনপ্রিয়, যেমন রুম্বা, মাকোসা এবং সুকাস। গ্যাবোনোয় লোক যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে ওবালা, এনগোম্বি, বালাফোন এবং ঐতিহ্যবাহী ড্রাম। গণমাধ্যম রেডিও-ডিফিউশন টেলিভিশন গ্যাবোনাইস (আরটিজি), যা সরকারের মালিকানাধীন এবং পরিচালিত, ফরাসি এবং আদিবাসী ভাষায় সম্প্রচারিত হয়। প্রধান শহরগুলিতে রঙিন টেলিভিশন সম্প্রচার চালু করা হয়েছে। ১৯৮১ সালে একটি বাণিজ্যিক রেডিও স্টেশন আফ্রিকা নাম্বার ১-এর কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। এটি মহাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রেডিও স্টেশন, এতে ফরাসি ও গ্যাবোনীয় সরকার এবং বেসরকারী ইউরোপীয় গণমাধ্যমের অংশগ্রহণ রয়েছে। ২০০৪ সালে, সরকার দুটি রেডিও স্টেশন পরিচালনা করেছিল এবং অন্য সাতটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ছিল। এছাড়াও দুটি সরকারি এবং চারটি বেসরকারি মালিকানাধীন টেলিভিশন স্টেশন ছিল। ২০০৩ সালে, প্রতি ১,০০০ জনের জন্য প্রায় ৪৮৮টি রেডিও এবং ৩০৮টি টেলিভিশন সেট ছিল। প্রতি ১,০০০ জনের মধ্যে প্রায় ১১.৫ জন ক্যাবল গ্রাহক ছিলেন। এছাড়াও ২০০৩ সালে, প্রতি ১,০০০ জনের মধ্যে ২২.৪ জনের ব্যক্তিগত কম্পিউটার ছিল এবং প্রতি ১,০০০ জনের মধ্যে ২৬ জনের ইন্টারনেটে প্রবেশ ছিল।জাতীয় মুদ্রণ পরিষেবা হল গ্যাবোনিজ প্রেস এজেন্সি যা একটি দৈনিক পত্রিকা গ্যাবন-মাতিন প্রকাশ করে (২০০২ সালের হিসাবে সংখ্যা)। ২০০২ সালে সরকার নিয়ন্ত্রিত দৈনিক সংবাদপত্র লিব্রভিলের এল'ইউনিয়ন-এর দৈনিক প্রচার সংখ্যা ছিল ৪০,০০০। সাপ্তাহিক গ্যাবন ডি'অজুর্ধুই যোগাযোগ মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রকাশিত হয়। প্রায় নয়টি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সাময়িকী রয়েছে যা হয় স্বাধীন বা রাজনৈতিক দলগুলির সাথে যুক্ত। এগুলি অল্প সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং প্রায়ই আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে বিলম্বিত হয়। গ্যাবনের সংবিধান বাকস্বাধীনতা ও স্বাধীন প্রেস প্রদান করেছে এবং সরকার এই অধিকারগুলিকে সমর্থন করে। বেশ কিছু সাময়িকী সক্রিয়ভাবে সরকারের সমালোচনা করে এবং বিদেশী প্রকাশনা ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়। রন্ধনপ্রণালী গ্যাবোনীয় রন্ধনপ্রণালী ফরাসি রন্ধনপ্রণালী দ্বারা প্রভাবিত, তবে প্রধান খাবারও পাওয়া যায়।Foster, Dean (2002). খেলাধুলা গ্যাবন জাতীয় ফুটবল দল ১৯৬২ সাল থেকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে।অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবল দল ২০১১ সালের সিএএফ অনূর্ধ্ব-২৩ চ্যাম্পিয়নশীপ জিতেছিল এবং ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছিল। গ্যাবন নিরক্ষীয় গিনির সাথে ২০১২ সালের আফ্রিকা কাপ অব নেশনস এর যৌথ আয়োজক ছিল, এবং প্রতিযোগিতার ২০১৭ সালের টুর্নামেন্টের একমাত্র আয়োজক ছিল। বার্সেলোনার স্ট্রাইকার পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং গ্যাবন জাতীয় দলের হয়ে খেলেন। গ্যাবন জাতীয় বাস্কেটবল দল, যার ডাকনাম লেস প্যান্থারেস,Afrobasket 2015 : Les Panthères en mise au vert en Serbie , GABON Review, 19 August 2015. Retrieved 12 August 2016. আফ্রোবাস্কেট ২০১৫-এ এর সর্বকালের সেরা পারফরম্যান্সে ৮ম স্থান অর্জন করেছিল। গ্যাবন ১৯৭২ সাল থেকে বেশিরভাগ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। দেশের একমাত্র অলিম্পিক পদকজয়ী হলেন অ্যান্থনি ওবাম, যিনি লন্ডনে অনুষ্ঠিত ২০১২ অলিম্পিকে তায়কোয়ান্দোতে রৌপ্য পদক জিতেছিলেন। গ্যাবনে চমৎকার বিনোদনমূলক মাছ ধরার ব্যবস্থা রয়েছে এবং এটি আটলান্টিক টারপন ধরার জন্য বিশ্বের সেরা স্থানগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জি বহিঃসংযোগ গ্যাবন। ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক. কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বিবিসি সংবাদ থেকে গ্যাবন ইন্টারন্যাশনাল ফিউচার থেকে গ্যাবনের জন্য মূল উন্নয়ন পূর্বাভাস সাধারণ পরিসংখ্যান ও অর্থনৈতিক স্টাডিজ অধিদপ্তর থেকে ২০০৯ সালের প্রতিবেদন (পিডিএফ) বিষয়শ্রেণী:প্রাক্তন ফরাসি উপনিবেশ বিষয়শ্রেণী:ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:গ্যাবন বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ওপেকের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য বিষয়শ্রেণী:প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:কমনওয়েলথ প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ
https://bn.wikipedia.org/wiki/গালাপাগোস_দ্বীপপুঞ্জ
thumb|গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ thumb|গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ (ইংরেজি ভাষায়: Galápagos Islands; মূল স্পেনীয় নাম: Archipiélago de Colón) বেশ কিছু আগ্নেয় দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। প্রশান্ত মহাসাগরে বিষুব রেখার দুই পাশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই দ্বীপগুলো মহাদেশীয় ইকুয়েডর থেকে ৯৭২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমানে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছে, মূলত তার অনন্যসাধারণ জীববৈচিত্র্যের কারণে। গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ ইকুয়েডরের গালাপাগোস প্রদেশের অন্তর্গত এবং দেশটির জাতীয় পার্ক সিস্টেমের অংশ। দ্বীপপুঞ্জের মানুষদের প্রধান ভাষা স্পেনীয়। এই দ্বীপগুলোতে প্রচুর এন্ডেমিক তথা বিরল প্রজাতি আছে। এই প্রজাতিগুলো গালাপাগোস ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না। বিবর্তন তত্ত্বের জনক চার্লস ডারউইন তার বিগল ডাত্রার সময় এই দ্বীপে এসেছিলেন। ডারউইনের ভ্রমণই গালাপাগোসকে বিখ্যাত করেছে। কারণ এখানকার বৈচিত্র্যময় বিরল প্রজাতিগুলো নিবিঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই ডারউইন প্রথমবারের মত বিবর্তনের পক্ষে প্রমাণ পেতে শুরু করেন। এখানকার অনেকগুলো প্রজাতি ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে কাজ করেছে। নৌচালনার জন্য এই দ্বীপের প্রথম নিখুঁত মানচিত্র প্রণয়ন করেছিলেন বাকানিয়ার অ্যামব্রোস কাউলি, ১৬৮৪ সালে। তিনি দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দ্বীপের নাম রেখেছিলেন তার সহযোগী জলদস্যুদের নামে। তার নৌভ্রমণে যেসব ইংরেজ অভিজাত লোকেরা সাহায্য করেছিল তাদের নামেও কয়েকটি দ্বীপের নাম রেখেছিলেন অবশ্য। বর্তমানে ইকুয়েডর সরকার প্রায় সবগুলো দ্বীপেরই আলাদা স্পেনীয় নাম দিয়েছে। দাপ্তরিক ও সরকারি কাজে স্পেনীয় নাম ব্যবহার করা হলেও অনেকে এখনও এগুলোকে পূর্বতন ইংরেজি নামে ডাকে। প্রধানত বাস্তুতান্ত্রিক গবেষকদের ইংরেজি নাম ব্যবহার করতে দেখা যায়। চার্লস ডারউইনের তার বিগল যাত্রায় যেসব দ্বীপে গিয়েছিলেন সেগুলোর ইংরেজি নাম আরও বেশি প্রচলিত। thumb|গালাপাগোসের পতাকা ইতিহাস দ্বিতীয় অভিযানের সময় এইচএমএস বিগ্‌ল এই দ্বীপে এসেছিল ক্যাপ্টেন ফিৎজরয়ের নেতৃত্বে। তারা দ্বীপে এসে পৌঁছেছিল ১৮৩৫ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর, মূল উদ্দেশ্য ছিল কিছু জরিপ পরিচালনা। ক্যাপ্টেন ফিৎজরয় ও তার তরুণ সঙ্গী জাহাজের প্রকৃতিবিদ চার্লস ডারউইন মূলত চারটি দ্বীপে বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও ভূতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা করেছিলেন। দ্বীপ চারটি হল চ্যাথাম, চার্লস, অ্যালবেমার্ল এবং জেমস আইল্যান্ড। কাজ শেষে ২০শে অক্টোবর তারা দ্বীপপুঞ্জ ছেড়ে গিয়েছিলেন তাদের বিশ্বভ্রমণ শেষ করার জন্য। এই দ্বীপে এসেই ডারউইন লক্ষ্য করেছিলেন এখানকার মকিংবার্ডগুলো একেক দ্বীপে একেক রকম। বর্তমানে এই পাখিগুলোকে ডারউইনের ফিঞ্চ বলা হয়, যদিও সে সময় ডারউইন মনে করেছিলেন এদের সাথে কোন গভীর সম্পর্ক নেই এবং দ্বীপ অনুযায়ী তাদের আলাদা নামকরণের বিষয়টিও ভ্রমণের সময় তিনি চিন্তা করেননি। সে সময় ইকুয়েডর প্রজাতন্ত্রের গালাপাগোস প্রদেশের গভর্নর ইংরেজ অভিজাত নিকলাস লসন চার্লস আইল্যান্ডে তাদের সাথে দেখা করেন। ডারউইনের সাথে দেখা হলে তিনি জানান, কচ্ছপও একেক দ্বীপে একেক রকম। দ্বীপপুঞ্জে থাকার শেষ দিনগুলোতে ডারউইন ভাবতে শুরু করেছিলেন, একেক দ্বীপে ফিঞ্চ ও কচ্ছপের এই বৈচিত্র্য প্রজাতির পরিবর্তন সম্পর্কে নতুন ধারণার জন্ম দিতে পারে। ইংল্যান্ডে ফিরে এসে ডারউইন গালাপাগোস সহ ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত নমুনাগুলো অভিজ্ঞ জীববিজ্ঞানী ও ভূতত্ত্ববিদদের দ্বারা পরীক্ষা করিয়ে দেখতে পেলেন, গালাপাগোসের ফিঞ্চগুলো বিভিন্ন প্রজাতির এবং দ্বীপ অনুযায়ী তাদের বৈশিষ্ট্য অনেক ভিন্ন। এই তথ্যগুলোই ডারউইনকে তার প্রাকৃতিক নির্বাচন এর মাধ্যমে বিবর্তন প্রমাণের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। এ ধারণা থেকেই তিনি তার সবচেয়ে বিখ্যাত বই অন দি অরিজিন অভ স্পিসিস রচনা করেন যা ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয়। বহিসংযোগ Parque Nacional Galápagos Galápagos Islands xeric scrub (ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড) গালাপাগোসের ভূতত্ত্ব – সাধারণ তথ্য সব এখানে আছে গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের প্রাথমিক উপনিবেশ স্থাপনকারীরা – একটি সাক্ষাৎকার বিষয়শ্রেণী:ইকুয়েডর বিষয়শ্রেণী:চার্লস ডারউইন বিষয়শ্রেণী:বিবর্তন বিষয়শ্রেণী:দ্বীপপুঞ্জ বিষয়শ্রেণী:গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ
গ্যালিলিও গ্যালিলেই
https://bn.wikipedia.org/wiki/গ্যালিলিও_গ্যালিলেই
গ্যালিলিও গ্যালিলেই (; জন্ম: ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৫৬৪ - মৃত্যু: ৮ জানুয়ারি, ১৬৪২) by John Gerard. Retrieved 11 August 2007 একজন ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ এবং দার্শনিক যিনি বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সঙ্গে বেশ নিগূঢ়ভাবে সম্পৃক্ত। তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে রয়েছে দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নতি সাধন যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে, বিভিন্ন ধরনের অনেক জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ, নিউটনের গতির প্রথম এবং দ্বিতীয় সূত্র, এবং কোপারনিকাসের মতবাদের পক্ষে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের মতে আধুনিক যুগে প্রকৃতি বিজ্ঞানের এতো বিশাল অগ্রগতির পেছনে গ্যালিলিওর চেয়ে বেশি অবদান আর কেউ রাখতে পারেননি। তাঁকে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক, আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক এবং এমনকি আধুনিক বিজ্ঞানের জনক হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। অ্যারিস্টটলীয় ধারণার অবসানে গ্যালিলিওর আবিষ্কারগুলোই সবচেয়ে বড়ো ভূমিকা রেখেছে। জীবনী গ্যালিলিও ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে ইতালির টুস্কানিতে অবস্থিত পিসা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ভিনসেঞ্জো গ্যালিলি গণিতজ্ঞ এবং সংগীতশিল্পী ছিলেন। ভিনসেঞ্জো ১৫২০ খ্রিস্টাব্দে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে জন্ম নেন। তার মায়ের নাম গিউলিয়া আমানাতি (Giulia Ammannati)। গ্যালিলিও ছিলেন বাবা মায়ের সাত সন্তানের (কারো কারো মতে ৬) মধ্যে সবার বড়ো। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে তিনি ভাইবোনদের মধ্যে সবচেয়ে মেধাবীও ছিলেন। বেশ অল্প বয়স থেকে গ্যালিলিওর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। সাধারণ শিক্ষার পর তিনি পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন সেখানেই তার পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হয়। তার পরেও ১৫৮৯ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার জন্য একটি পদ পান এবং সেখানে গণিত পড়ানো শুরু করেন। এর পরপরই তিনি পাদুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান এবং সেখানকার অনুষদে জ্যামিতি, বলবিজ্ঞান এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে ১৬১০ খ্রিস্টাব্দের পূর্ব পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। ওই সময়ের মধ্যেই তিনি বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে ভাবেন এবং বহু গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করেন। গ্যালিলিও এবং মারিনা গ্যামবা তিন সন্তানের জন্ম দেন, কিন্তু তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি। গ্যালিলিও একজন নিবেদিত রোমান ক্যাথলিক ছিলেন বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে তা মেনে নিলে তার বিবাহ বহির্ভূত এই যৌনাচার অনেকটাই অবাস্তব মনে হয়। তাদের দুই মেয়ে (ভার্জিনিয়া ও লিভিয়া) এবং এক ছেলে (ভিনসেঞ্জিও) জন্মেছিল। বিবাহ বহির্ভূত সন্তান উৎপাদনের জন্য তাদের দুই মেয়েকেই স্বল্প বয়সে আরসেত্রিতে অবস্থিত সান মেটিও নামক গির্জায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাদের দুই মেয়েকে বাকি জীবন সেখানেই অতিবাহিত করতে হয়েছিল। কনভেন্টে প্রবেশের পর ভার্জিনিয়া মারিয়া সেলেস্টি নাম ধারণ করে, তিনি-ই ছিলেন গ্যালিলিওর সন্তানদের মধ্যে সবার বড়ো। ভার্জিনিয়া সবচেয়ে আদরের সন্তানও ছিলেন এবং বাবার মেধার খানিকটা উত্তরাধিকার তিনি-ই লাভ করতে সমর্থ হয়েছিলেন। ১৬৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২ এপ্রিল তারিখে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন। তার সমাধি বাসিলিকা ডি সান্তা ক্রস ডি ফিরেঞ্জে গ্যালিলিওর সমাধির পাশেই অবস্থিত। লিভিয়া (জ. ১৬০১) সুওর আরকাঞ্জেলা নাম ধারণ করেন। বড়ো বোনের মতো তিনি কিছু করে দেখাতে পারেননি, জীবনের বেশির ভাগ সময়ই তিনি অসুস্থ ছিলেন। ছেলে ভিনসেঞ্জিও (জ. ১৬০৬) পরবর্তীতে বৈধ জাত্যাধিকারী হন এবং সেসটিলা বচ্চিনারিককে (Sestilia Bocchineri) বিবাহ করেন। thumb|left|200px|ফ্লোরেন্সের উফিজির বাইরে অবস্থিত গ্যালিলিওর মূর্তি ১৬১২ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও রোমে গিয়ে অ্যাকাডেমিয়া দেই লিন্সেই-তে যোগ দেন। সেখানে তিনি মূলত সৌর কলঙ্ক পযর্বেক্ষণ করতেন। ওই বছরই কোপারনিকাসের মতবাদের বিরোধী মতবাদ প্রচারিত হয় এবং গ্যালিলিও তা সমর্থন করেন। ১৬১৪ খ্রিস্টাব্দে সান্তা মারিয়া নভেলার প্রচারবেদিতে দাঁড়িয়ে ফাদার টমাসো কাচ্চিনি (Tommaso Caccini, ১৫৭৪ - ১৬৪৮) ব্যাখ্যা সহকারে পৃথিবীর গতি সম্পর্কে গ্যালিলিওর মতবাদ বর্ণনা করেন। এরপর সেই মতবাদের ভিত্তিতে তার বিচার করেন এবং ঘোষণা করেন যে, এগুলো ভয়ঙ্কর এবং ধর্মদ্রোহীতার শামিল। এধরনের অভিযোগ থেকে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টায় তিনি রোমে যান। কিন্তু ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে কার্ডিনাল রবার্ট বেলারমাইন ব্যক্তিগতভাবে তার মামলাটি হাতে নেন এবং তাঁকে হেনস্তা করতে শুরু করেন। ধর্মীয় আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কোপারনিকাসের তত্ত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং ধর্মীয় আইন হিসেবে কোপারনিকান জ্যোতির্বিজ্ঞান পড়তে বা পড়াতে বাধ্য করা হয়। ১৬২২ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও তার বিখ্যাত বই দ্য অ্যাসাইয়ার (Saggiatore) রচনা করেন যা ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দে স্বীকৃতি পাওয়ার পর প্রকাশিত হয়। ১৬২৪ খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীর প্রথম অণুবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করেন। ১৬৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি রোমে ফিরে যান তার রচিত একটি বই প্রকাশের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য। বইটির নাম ছিল ডায়ালগ কনসার্নিং দ্য টু চিফ ওয়র্ল্ড সিস্টেম্‌স। এটি এই লাইসেন্সের আওতাতেই ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ফ্লোরেন্স থেকে প্রকাশিত হয়। ওই বছরেরই অক্টোবর মাসে তাঁকে রোমের পবিত্র দপ্তরের (Holy Office) সম্মুখীন হতে হয়। কারণ ছিল "Congregation for the Doctrine of the Faith" (বিশ্বাসের উপদেশাবলির জন্য সমাবেশ)। আদালত থেকে তাঁকে একটি দণ্ডাদেশ দেওয়া হয় যার মাধ্যমে তাকে পূর্ববর্তী ধ্যান-ধারণা শপথের মাধ্যমে পরিত্যাগের জন্য বলা হয়। ওই দণ্ডাদেশের কার্যকরতা প্রমাণের জন্যই তাঁকে সিয়েনায় একঘরে জীবন কাটাতে হয়। এর কিছু পর ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দে ডিসেম্বরে তাঁকে তার নিজ বাড়ি আরসেত্রিতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। ১৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে তার বড়ো মেয়ের মৃত্যুর পর গ্যালিলিও অনেকটাই ভেঙে পড়েন। বড়ো মেয়ে সিস্টার সেলেস্টি (১৬০০ - ১৬৩৪) তাঁকে সবসময় সঙ্গ দিত, এই অকালমৃত্যুতে তাই গ্যালিলিও হয়ে পড়েন নিঃসঙ্গ। ১৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও লিডেন থেকে তার সর্বশেষ বই টু নিউ সায়েন্সেস প্রকাশ করেন। আরসেত্রিতে ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে ৮ জানুয়ারি তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার ছাত্র ভিনসেঞ্জো ভিভিয়ানি তার পাশে ছিলেন। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিসমূহ গ্যালিলিও বিজ্ঞানের জগতে পরিমাণগত পরিমাপের পদ্ধতির গোড়াপত্তনে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করেন। তার এই পরিমাপ ফলগুলো গাণিতিক সূক্ষ্মতার বিচারে উত্তীর্ণ হয়েছিল। একই সময় উইলিয়াম গিলবার্ট চুম্বকত্ব এবং বিদ্যুৎ নিয়ে বেশ কিছু পরিমাণগত অধ্যয়ন করেছিলেন। গ্যালিলিওর বাবা ভিনসেঞ্জো গ্যালিলি কিছু পরীক্ষা করেছিলেন যার মাধ্যমে পদার্থবিজ্ঞানের জগতে এ পর্যন্ত জানা মতে প্রথম অরৈখিক সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল। সুর সৃষ্টিকারী যন্ত্রের ওপর এই পরীক্ষা চালিয়ে তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে, একটি টানা তারের জন্য, পিচ টানের বর্গমূলের সমানুপাতিক। অবদান দূরবীক্ষণ যন্ত্রের আবিষ্কার thumbnail|right|নিজের আবিষ্কৃত দূরবীক্ষণ যন্ত্রের প্রদর্শন ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও স্বাধীনভাবে এবং উন্নত ধরনের দূরবীক্ষণ যন্ত্র নির্মাণ ও এই যন্ত্রকে জ্যোতির্বিদ্যায় সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন। এর আগে ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে ওলন্দাজ চশমা নির্মাতা লিপেরশাইম তার নির্মিত এক দূরবীক্ষণ যন্ত্রের কথা প্রকাশ করেন এবং সেই বছরই এই অদ্ভুত কাচ নির্মিত যন্ত্রের কথা গ্যালিলিওর নিকট পৌঁছে। এসময় তিনি তার এক রচনায় লেখেন: “প্রায় ১০ মাস পূর্বে আমার কাছে সংবাদ পৌঁছে যে জনৈক ওলন্দাজ চশমা নির্মাতা এমন এক যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন যার দ্বারা দূরবর্তী বস্তুদের নিকটবর্তী বস্তুর মতো স্পষ্ট দেখা যায়। এ খবর পাওয়ামাত্র আমি নিজে কীভাবে এরূপ একটি যন্ত্র নির্মাণ করতে পারি তা চিন্তা করতে লাগলাম।” শীঘ্রই দূরবীক্ষণ যন্ত্রের নানা উন্নতি সাধন করে গ্যালিলিও দূরবর্তী বস্তুর অন্তত ৩০ গুণ বড়ো করে দেখার ব্যবস্থা করেন। চাঁদের কলঙ্কের কারণ আবিষ্কার দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে জ্যোতিষ্কদের প্রথম পর্যবেক্ষণের ফল ‘সাইডরিয়াস নানসিয়াস’ বা ‘নক্ষত্র থেকে সংবাদবাহক’ গ্রন্থে লিপিবব্ধ হয় (প্রকাশকাল ১৬১০ খ্রিস্টাব্দ)। চাঁদের পৃষ্ঠের খাদ, ছোটো-বড়ো অনেক দাগ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে এই গ্রন্থে আলোচিত হয়। ভূপৃষ্ঠের ন্যায় চাঁদের উপরিভাগে যে পাহাড়, পর্বত, উপত্যকা, নদী, গহ্বর, জলাশয় প্রভৃতির দ্বারা গঠিত গ্যালিলিও এইরূপ অভিমত ব্যক্ত করেন। দূরবীক্ষণ যন্ত্রে বড়ো বড়ো কাল দাগ দেখে তিনি তাদের সমুদ্র মনে করেছিলেন, পরে অবশ্য এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। ছায়াপথ, বিষমতারা, নীহারিকা thumbnail|right|১৮৫৭ খ্রিস্টাব্দে ক্রিস্টিয়ানো বান্টি দ্বারা অঙ্কিত চিত্র: গ্যালিলিওকে রোমান কর্তৃপক্ষের জিজ্ঞাসাবাদ খালি চোখে অদৃশ্য অসংখ্য নক্ষত্রের অস্তিত্ব দূরবীক্ষণ যন্ত্রে ধরা পড়ে। সে সময় খালি চোখে কৃত্তিকা তারামণ্ডলে মাত্র ৬টি নক্ষত্র দেখা যেত; কিন্তু গ্যালিলিও দূরবীক্ষণ যন্ত্রের দ্বারা ৩৬টি নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করেন। সে সময়ের রহস্যময় ছায়াপথ আকাশগঙ্গা পর্যবেক্ষণ করে দেখান যে, তা আসলে অসংখ্য নক্ষত্রের সমষ্টি। দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে তিনি কিছু বিষমতারা এবং কয়েকটি নীহারিকাও আবিষ্কার করেছিলেন। বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ আবিষ্কার দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে গ্যালিলিও প্রথম পর্যায়ের আবিষ্কারগুলোর মধ্যে বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ আবিষ্কার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি পরপর কয়েক রাত বৃহস্পতি গ্রহ পর্যবেক্ষণ করে বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ খুঁজে পান। বৃহস্পতির উপগ্রহের আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় যে, ‘গ্রহ-নক্ষত্র প্রভৃতি জ্যোতিষ্করা একমাত্র পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে’, প্রাচীন জ্যোতির্বিদদের এই মতবাদ সত্য নয়। শনির বলয় ১৬১০ খ্রিস্টাব্দের শেষভাগে পাদুয়া পরিত্যাগের কিছু পূর্বে গ্যালিলিও শনির বলয় আবিষ্কার করেন। সৌর কলঙ্ক ১৬১০ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে গ্যালিলিও সর্বপ্রথম সূর্যে কতগুলো কালো দাগ পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু ১৬১২ খ্রিস্টাব্দের মে মাসের পূর্বে তিনি এ আবিষ্কারের কথা প্রকাশ করেননি। ইতিমধ্যে ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানী টমাস হ্যারিয়ট, হল্যান্ডের জন ফ্যাব্রিসিয়াস ও জার্মানিতে শাইনার স্বাধীনভাবে সৌরকলঙ্ক পর্যবেক্ষণ করেন, এবং তাদের আবিষ্কারের কথা গ্যালিলিওর আগেই প্রকাশিত হয়। সেই জন্য সৌরকলঙ্ক আবিষ্কারের কৃতিত্ব হ্যারিয়ট, ফ্যাব্রিসিয়াস, শাইনার ও গ্যালিলিও প্রত্যেকেরই আংশিকভাবে প্রাপ্য। রচনাবলি সিডেরিয়াস নানসিয়াস অথবা দি স্টারি মেসেঞ্জার - ১৬১০ লেটা্র্স অন সানস্পট্‌স - ১৬১৩ লেটার টু গ্র‌্যান্ড ডাচেস ক্রিস্টিনা - ১৬১৫ দ্য অ্যাসায়ার (The Assayer) - ১৬২৩ ডায়ালগ কনসার্নিং দ্য টু চিফ ওয়র্ল্ড সিস্টেম্‌স - ১৬৩২ টু নিউ সায়েন্সেস - ১৬৩৮ ডায়াগ্রামা আরও দেখুন মেডিসি গ্যালিলীয় রূপান্তর ভিনসেঞ্জো গ্যালিলি বৈজ্ঞানিক বিপ্লব তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ গ্যালিলিওর চিত্রসমুহ গ্যালিলি গ্যালিলিওর বিচার প্রক্রিয়ার প্রকৃত দলিল ভ্যাটিক্যান গোপন আর্কাইভ থেকে গ্যালিলিও সম্পর্কে: ক্যাথলিক.নেট গ্যালিলিওকে নিয়ে কর্মশালা রাইস বিশ্ববিদ্যালয় (Rice University) CCD গ্যালিলিয়ান টেলিস্কোপে দেখা ছবি গ্যালিলিও আসলে কী দেখছিলেন তার সম্ভাবনা বিষয়শ্রেণী:১৫৬৪-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৬৪২-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:ইতালীয় উদ্ভাবক বিষয়শ্রেণী:গ্যালিলিও গ্যালিলেই বিষয়শ্রেণী:তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:বিজ্ঞানের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:প্রাকৃতিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:ইতালীয় রোমান ক্যাথলিক বিষয়শ্রেণী:পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:ইতালীয় বৈজ্ঞানিক যন্ত্র নির্মাতা
ভাস্কো দা গামা
https://bn.wikipedia.org/wiki/ভাস্কো_দা_গামা
ভাস্কো দা গামা (, উচ্চারণ: ভ়াশ্‌কু দ্য গ্যঁম্য; ১৪৬০ – ২৪ ডিসেম্বর ১৫২৪, কোচি, ভারত) একজন পর্তুগীজ অনুসন্ধানকারী এবং পর্যটক যিনি প্রথম পঞ্চদশ শতাব্দীতে সমুদ্রপথে ইউরোপ থেকে ভারতে আসেন। ১৪৯৮ সালের ২০মে ভারতের কালিকটে পৌছান তিনি। সেই সময় কালিকটের রাজা ছিলেন জামোরিনি। তিনি ভাস্কো দা গামা কে সম্বর্ধনা জানান। তিনিই প্ৰথম ইউরোপীয় ব্যক্তি যিনি সম্পূৰ্ণ সাগর পথ পাড়ি দিয়ে ভারতে এসে উপস্থিত হন, তার ভ্ৰমণে এশিয়া এবং ইউরোপকে সংযোগ করার সাথে সাথে আটলান্তিক মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরকে সংযোগ করেছিল এবং এ দিক থেকেই তিনি পশ্চিমা সংস্কৃতির সাথে পাশ্চাত্য দুনিয়ার সেতুবন্ধন গড়ে তোলেন৷ তার প্ৰথম ভারতমুখী ভ্ৰমণে (১৪৯৭-১৪৯৯) এই কাজ সম্পন্ন হয়েছিল৷ ভাস্কো দা গামার এই আবিষ্কার বৈশ্বিক সাম্ৰাজ্যবাদের ইতিহাসে অতি তাৎপৰ্য্যপূৰ্ণ ছিল কারণ এই ভ্ৰমণের দ্বারাই পর্তুগীজদের এশিয়া মহাদেশে দীৰ্ঘকালীন উপনিবেশ স্থাপনের পথ সুগম হয়েছিল৷ তার দ্বারা আবিষ্কৃত পথটি বিবাদপূৰ্ণ ভূমধ্য সাগর এবং বিপদজনক আরব উপদ্বীপ পার হওয়া থেকে রেহাই দিয়েছিল কারণ সমগ্র পথটিই ছিল সাগর পথে৷ তিনি দুটি ভারত অভিমুখী নৌযাত্ৰার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন,প্রথমটি এবং চতুর্থটি, চতুর্থ যাত্ৰাটি ছিল সবচেয়ে বড় যাত্রা যা তিনি তার প্রথম সমুদ্র যাত্রা থেকে ফিরে আসার চার বছর পর পরিচালনা করেন। তার অবদানের জন্য ১৫২৪ সালে ভারতে নিযুক্ত পতুৰ্গীজ সাম্ৰাজ্যের গভৰ্ণর হিসেবে ভাইসরয় উপাধিতে নিযুক্তি করা হয়। এবং ১৫১৯ সালে তাকে নবগঠিত ভিডিগুয়েরা(Vidiguera)র কাউন্ট পদবী প্ৰদান করা হয়েছিল৷ এই দিনটিতে আবিষ্কারের জন্যে তিনি ইতিহাসের পাতায় স্মরণীয় হয়ে আছেন। তার অন্বেষণ এবং শিক্ষাদীক্ষা উদ্‌যাপন করতে বিশ্বব্যাপী অসংখ্য শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করা হয়েছে। পতুৰ্গীজ মহাকাব্য অস লুইসিয়াডাস, তার সম্মানার্থে লেখা হয়েছে। ভারতে তার প্ৰথম ভ্ৰমণ কে বিশ্ব ইতিহাসে মাইলফলক বলে বিবেচনা করা হয় কারণ এই ভ্ৰমণের ফলেই বিশ্বায়নের বহুসাংস্কৃতিক ধারণাটির প্রচলন হয়৷. আসা যাওয়ার জন্য অতিক্ৰম করা দূরত্বের দৈৰ্ঘ্য সেই সময়কার সৰ্বাধিক ভ্ৰমণ দূরত্ব(সমুদ্র যাত্রা) ছিল এবং এই দূরত্ব বিষুবরেখার দৈৰ্ঘ্য থেকেও বেশি ছিল৷Diffie, Bailey W. and George D. Winius, "Foundations of the Portuguese Empire, 1415–1580", p.176 নৌপথ আবিষ্কারের এক শত বছর পর, ইউরোপীয় শক্তি যেমন ইংল্যান্ড, নেদারল্যান্ডস এবং ফ্রান্স অবশেষে সক্ষম হয় পর্তুগীজদের একাধিপত্য ভেঙ্গে দিতে এমনকি তাদের নৌ শক্তির আধিপত্য আফ্রিকার কাছাকাছি, ভারত মহাসাগর এবং প্রাচ্যের দূরবর্তী স্থানে, যা প্রাচ্যে ইউরোপীয় সাম্ৰাজ্যবাদের এক নতুন যুগ সৃষ্টি করে। হাজার হাজার জীবন এবং ডজন ডজন জাহাজ ডুবি এবং আক্রমণ, নাবিকদের দশকের পর দশক ধরে প্রচেষ্টার পর ভাস্কো দা গামা ১৪৯৮ সালের ২০মে ভারতের কালিকট(Calicut) বন্দরে উপস্থিত হতে সক্ষম হন। দা গামার আবিষ্কারে, পৌরাণিক ভারতীয় মসলা ব্যবসায় এসেই বাধাহীন সহযোগিতায় পর্তুগীজ সাম্ৰাজ্যের অর্থনীতি উন্নত করে তোলে, যা মূলত উত্তর এবং উপকূলীয় পশ্চিম আফ্রিকার সাথে ব্যবসা বাণিজ্যের মাধ্যমে হত। প্রথম দিকে যার বেশির ভাগই গোলমরিচ এবং দারুচিনি/ডালচিনি ছিল, তবে শীঘ্রই অন্যান্য পণ্য ও যোগ হয়, যা ইউরোপে সম্পূর্ণ নতুন ছিল এবং কয়েক দশক ধরে ব্যবসায়িক আধিপত্য বজায় রাখতে কার্যকর হয়েছিল। প্রথম জীবন thumb|সিনেস শহরে ভাস্কো দা গামার ভাস্কর্য thumb|ভাস্কো দা গামা ভাস্কো দা গামা জন্মগ্রহণ করেছিলেন পর্তুগালের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে সিনেস নামক একটি জায়গায় ১৪৬০Modern History Sourcebook: Vasco da Gama: Round Africa to India, 1497-1498 CE , fordham.edu, Retrieved June 27, 2007 কিংবা ১৪৬৯ সালেCatholic Encyclopedia: Vasco da Gama Retrieved June 27, 2007 সম্ভবত চার্চ নোসা সেনিয়োরা দাস সালাস এর কাছে একটি বাড়িতে। সিনেস,আলেনতেজো উপকূলের হাতে গোনা কয়েকটি সমুদ্র বন্দরের একটিতে অবস্থিত,যেখানে কিছু সংখ্যক চুনকাম করা,লাল-টালির কুটির, প্রধানত জেলেরা ভাড়াটিয়া থাকত। তার বাবার নাম ছিলো এস্তেভাঁও দা গামা।তার পিতা এস্তেভাঁও দা গামা(Estevao da Gama) ১৪৬০ সাল থেকে ইনফেন্ট ফাৰ্ডিনান্ড,ডিউক অব ভিসেউ(Infant Ferdinand,Duke of Viseu)র নাইট(Knight) হিসাবে কর্মরত ছিলেন.৷ তারপর তিনি অৰ্ডার অব সান্টিয়াগো(Order of Santiago)র সামরিক পদ মৰ্যাদা পান৷ ১৪৬০ সাল থেকে ১৪৭৮ সাল পর্যন্ত তিনি সিনেসের গভর্নর ছিলেন, এবং খাজনা গ্রহীতা হিসেবে কাজ চালিয়ে যান। এস্তেভাঁও দা গামা “জোয়াও চড্ৰের”(“জোয়াও দে রেসেন্ডে” নামেও পরিচিত) কন্যা ইসাবেল চড্ৰে(Isabel Sodré)কে বিয়ে করেন, যিনি ইংরেজ বংশোদ্ভূত অভিজাত পরিবারের তরুণী ছিলেন।The Sodrés were said to have been descended from Frederick Sudley, of Gloucestershire, who accompanied the Earl of Cambridge to Portugal in 1381, and subsequently settled down there (Subrahmanyam, 1997, p. 61). তার পিতা ভিসেন্তে চড্রে এবং ভাই ব্রাস চড্রের “ইনফেন্ট ডিয়গো,ডিউক অব ভিসেউ” এর সাথে পারিবারিক সম্পর্ক ছিল এবং মিলিটারি তে বিশেষ পরিচিতি ছিল। এস্তেভাঁও দা গামা এবং ইসাবেল চড্ৰের পাঁচ পুত্রের মধ্যে ভাস্কো দা গামা তৃতীয় ছিলেন৷ তার ভাইদের নাম ছিল পউল’ দা গামা(Paulo de Gama),জোয়াও চড্ৰে,পেড্ৰো দা গামা(Pedro da Gama) এবং আইরেস দা গামা(Aires da Gama)৷ টেরেসা দা গামা(Teresa da Gama) নামে তাদের এক বোন ছিল (যার সাথে “লোপো মেনডেস দে ভাস্কোনসেলোস” এর বিয়ে হয়েছিল) ৷Subrahmanyam, 1997, p. 61. ভাস্কো দা গামার প্রাথমিক জীবনের খুব কমই জানা যায়৷ পতুৰ্গীজ ইতিহাসবিদ টেক্সেইরা দে আরাগাও(Texeira da Gama)র মতে ভাস্কো দা গামা ইভরা শহরে লেখাপড়া করতেন এবং তিনি সম্ভবত গণিত এবং জাহাজ চালনা বিদ্যা শিখেছিলেন৷ এটাও মনে করা হয় যে তিনি জ্যোতিৰ্বিদ আব্ৰাহাম জাকুটো(Abraham Zacuto)র অধীনে অধ্যয়ন করতেন৷Subrahmanyam, 1997, p. 62. ১৪৮০ সালে দা গামা পিতাকে অনুসরণ করে অর্ডার অব সান্তিয়াগোতে যোগদান করেন।Subrahmanyam, 1997, pp. 60-61. সে সময়ে সান্তিয়াগোর পণ্ডিত ছিলেন রাজকুমার জন(Prince John)৷ যিনি পরবর্তীতে ১৪৮১ সালে পৰ্তুগাল এর রাজা জন দ্বিতীয়(John II) হিসেবে সিংহাসনে আরোহণ করেন ৷ ১৪৯২ সালে জন দ্বিতীয় সেতুবাল এবং এলগাৰ্ভ বন্দরে শান্তিকালীন সময়ে পতুৰ্গালের জাহাজে ফ্ৰান্স জাহাজের দ্বারা আক্রমণের প্ৰতিশোধ স্বরূপ ফ্রান্স জাহাজ জব্দ করার প্রয়াসে ভাস্কো দা গামাকে পাঠানো হয় – যা তিনি খুব অল্পসময়ে এবং ফলপ্রসুভাবে সম্পাদন করেন৷Subrahmanyam, 1997, p. 63. ভাস্কো দা গামার পূর্বের অভিযানসমূহ পনের শতকের প্ৰথম হতেই, রাজা হেনরীর উদ্যোগে আফ্রিকার উপকূলবর্তী অঞ্চলে অভিযান চালানোর জন্য সংঘবদ্ধ হতে থেকে, মূলত পশ্চিম আফ্রিকার সম্পদের(বিশেষত সোনা) অন্বেষণে ৷ তারা তাদের পর্তুগীজ সামুদ্রিক অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করেছিল, তবুও তাদের প্রচেষ্টার প্রতিফলন ঘটিয়ে অতি সামান্য মুনাফা অর্জন করে। ১৪৬০ সালে হেনরীর মৃত্যুর পর, পর্তুগীজ রাজা সেই অভিযান চালিয়ে নিতে খুব কমই আগ্রহ দেখান, এবং ১৪৬৯ সালে আফ্রিকার আবিষ্কৃত অংশসমূহে ফের্ণাও গোমেসের নেতৃত্ব দেয়া একটি ব্যক্তিগত লিসবন ব্যবসায়ী সংস্থার নিকট বিক্রী করা হয়৷ কয়েক বছরের মধ্যেই, গোমেসের ক্যাপ্টেন পর্তুগীজ জ্ঞানের আলোকে গৈরিক ব্যবসায়, মেলেগুয়েটা কাগজ, গজদন্ত এবং ক্রীতদাসের ব্যবসায় এর মাধ্যমে গিনি উপসাগর পর্যন্ত তাদের ব্যবসায় কে সম্প্রসারণ করতে সক্ষম হয়৷ ১৪৮১ সালে রাজা হয়ে, পর্তুগালের জন দ্বিতীয় বহু দীর্ঘকালীন সংস্কার সাধন করে৷ সম্রাটের সামন্ততান্ত্রিক আভিজাত্যের নির্ভরশীলতার হ্রাস করতে, জন দ্বিতীয়ের রাজকীয় কোষাগার স্থাপন করার প্রয়োজন হয়, এবং লক্ষ্য করেন রাজ বাণিজ্য এর আওতাধীন। তার পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই আফ্রিকায় সোনা এবং দাস ব্যবসায় বহুলভাবে প্রসারিত হয়৷ তিনি ইউরোপ এবং এশিয়ার মধ্যে অতি লাভবান মশলা ব্যবসায় এর প্রসারে উচ্চাকাঙ্ক্ষী ছিলেন। ঐসময়ে, বস্তুত এটা ছিল ভেনিস প্রজাতন্ত্রের দ্বারা একচেটিয়া, যারা লেভ্যাটিনের স্থলপথ এবং মিশরীয় বন্দরগুলোর মাধ্যমে লোহিত সাগর পাড়ি দিয়ে ভারতের মশলা বাজারগুলো পরিচালনা করত। জন দ্বিতীয় ক্যাপ্টেনের জন্য একটি নতুন বিষয়বস্তু প্রণয়ন করেন যে: নৌপথে আফ্ৰিকা মহাদেশের কাছাকাছি হয়ে এশিয়ায় আসার রাস্তা অনুসন্ধান করতে হবে। thumb|left|300px|ভাস্কো দা গামা ত্যাগ করছেন লিসবন বন্দর,পর্তুগাল ভাস্কো দা গামা যখন তার ক্যারিয়ারের বিশতম বছরে পৌঁছেন, তখন তার পরিকল্পনার সফলতা আসে। ১৪৮৭ সালে জন দ্বিতীয় দুজন গুপ্তচর, পেরো দা কভিলহা এবং আফন্সো দে পাইভা, স্থলপথে মিশর এবং পূর্ব আফ্রিকা হয়ে ভারত পর্যন্ত ভ্রমণ করে মশলা বাজার এবং বাণিজ্য পথের সন্ধান নিয়ে আসতে পাঠান৷ ১৪৮৮ সালে বারতলমিউ ডায়াস নামের জন দ্বিতীয় ক্যাপ্টেন কেপ অব গুড হোপ ভ্রমণ করে মৎস্য নদী (রিও দো ইনফ্যান্টে) পর্যন্ত ভ্রমণ করে যা বর্তমানকালের দক্ষিণ আফ্রিকায়, এবং এইবলে প্রতিবেদন দেয় যে আফ্রিকার অনাবিষ্কৃত উপকূল উত্তর-পূর্ব দিক পর্যন্ত প্রসারিত ৷ ডায়াস এবং দা কভিলহা ও দে পেইভা উভয়ের তথ্যসমূহের ওপর ভিত্তি করে ভারত মহাসাগরের সাথে সংযুক্ত করে একটি সুগম সামুদ্রিক বাণিজ্যিক পথ অনুসন্ধান কাজ বাকী রয়৷ প্রথম ভ্রমণ ১৪৯৭ সালের ৮ জুলাই ৪টি জাহাজ এবং ১৭০জনের এক নাবিকদল নিয়ে ভাস্কো দা গামা লিসবন থেকে যাত্রা শুরু করেন। আফ্রিকা থেকে ভারত এবং আবার ফিরে আসার দূরত্ব বিষুবরেখার চারপাশের দূরত্ব থেকে ও বেশি ছিল।.Da Gama's Round Africa to India , fordham.edu Retrieved 16 November 2006. নাবিক হিসেবে তাঁর সাথে ছিলেন পর্তুগালের সবচেয়ে অভিজ্ঞ পেরো দি আলেনকুয়ের(Pero de Alenquer),পেড্ৰো ইস্কোবার( Pedro Escobar),জোয়াও দি কইম্ব্রা( João de Coimbra) এবং আফন্সো গনকালেভস(Afonso Gonçalves)৷ প্রতিটা জাহাজে কতজন করে নাবিক ছিলেন তার সঠিক সংখ্যা জানা যায়নি তবে যাত্রা শেষে ৫৫জন লোক ফিরে এসেছিলেন এবং দুটি জাহাজ হারিয়ে যায়। ফলে যাত্রার জন্যে দুটি জাহাজ নতুন করে নির্মাণ করা হয়েছিল৷ তাদের সাথে যে চারটি জাহাজ ছিল: 300px|thumb|ভাস্কো দা গামার প্রথম যাত্রা পথ(১৪৯৭–১৪৯৯) সাঁও গ্যাব্রিয়েল(Sao Gabriel),নেতৃত্ব দেন ভাস্কো দা গামা; ১৭৮ ওজন, দৈর্ঘ্য ২৭ মিটার, প্রস্থ ৮.৫ মিতার, হলরুম ২.৩ মিটার, পাল ৩৭২ মিটার² সাঁও রাফায়েল(Sao Rafael),নেতৃত্ব দেন ভাস্কো দা গামার ভাই পউল দা গামা; যেটা ছিল সাঁও গ্যাব্রিয়েলের অনুরূপ মালবাহী বেরিও, যা আগের দুটার চেয়ে কিছুটা ছোট (পরবর্তীতে যেটার নাম দেয়া হয় সাও মিগুয়েল),নেতৃত্ব দেন নিকোলউ কোয়েলহো(Nicolau Coelho) একটি নাম না জানা মালবাহী জাহাজ,যা আফ্রিকার পূর্ব উপকূলে, সাঁও ব্রাস উপসাগরের কাছে ধ্বংস হয়ে যায়,যার নেতৃত্ব দেন গনকালো নানস(Goncalo Nunes) অন্তরীপে যাত্রা ৮ জুলাই, ১৪৯৭ সালে তারা লিসবনের উদ্দেশ্যে সমুদ্রযাত্রা শুরু করে। ভাস্কো দা গামা পূর্বের ভ্রমণকারীদের দ্বারা বর্ণিত তেনেরিফা এবং ভারডি অন্তরিপের দ্বীপপূঞ্জসমূহ হয়ে আফ্রিকার উপকূল বরাবর অতিক্রম করা পথ অনুসরণ করেন৷ বর্তমানকার সিয়েরা লিয়ন উপকূলে পৌঁছার পর দা গামা দলবল সমেত মুক্ত সাগরের দক্ষিণের পথ ধরে বিষুবরেখা অতিক্রম করে বার্তলমিউ ডায়াস দ্বারা ১৪৮৭ সালে আবিষ্কৃত দক্ষিণ আটলাণ্টিকের পশ্চিমমুখী পথ সন্ধান করেন।Gago Coutinho, C.V. (1951–52) A Nautica dos Descobrimentos: os descobrimentos maritimos visitos por um navegador, Lisbon: Agencia Geral do Ultramar; p. 319-63; Axelson, E. (1988) "The Dias Voyage, 1487–1488: toponymy and padrões", Revista da Universidade de Coimbra, Vol. 34, p. 29-55 offprint; Waters, D.W. (1988) "Reflections Upon Some Navigational and Hydrographic Problems of the XVth Century Related to the voyage of Bartolomeu Dias", Revista da Universidade de Coimbra, Vol. 34, p. 275-347. offprint. এতে তিনি সফল হন এবং ১৪৯৭ সালের ৪ নভেম্বর আফ্রিকা উপকূলের তটরেখায় আসেন৷ তিন মাসের অধিক সময় ধরে যাত্রার পর তারা পথ ভ্রমণ করেন যা ছিল সেইসময়কার দীর্ঘতম সামুদ্রিক ভ্রমণ৷. thumb|left|ভাস্কো দা গামার ক্রোশ স্মৃতিস্তম্ব, দক্ষিণ আফ্রিকা ১৬ ডিসেম্বর, তারা “বিশাল মৎস্য নদী” পার হয় (প্রাচ্যের অন্তরীপ, দক্ষিণ আফ্রিকা) – যেখান থেকে ডায়াস ফিরে আসে– এবং অজানা সমুদ্রের দিকে যাত্রা করেন যা কোনো ইউরোপীয় ব্যক্তিদের কাছে অপরিচিত ছিল। খ্রীষ্টমাসের সময় হওয়ায়, তারা সেই উপকূল অঞ্চলের নাম দিয়েছিল নাটাল , মানে পতুৰ্গীজ ভাষায় যীশুখ্রীষ্টর জন্ম৷ মোজাম্বিক ভাস্কো দা গামা ১৪৯৮ সালের ২রা মার্চ থেকে ২৯ শে মার্চ পর্যন্ত মোজাম্বিক দ্বীপের নিকটে সময় অতিবাহিত করেন৷ ভারত মহাসাগরে বাণিজ্যিক অঞ্চলের একটি অংশ ছিল পূর্ব আফ্রিকার উপকূলবর্তী আরব অধ্যুষিত এই অঞ্চল। স্থানীয় মুসলিম লোকেরা খ্রীষ্টানদের প্রতি আক্রমণাত্মক হতে পারে ভেবে দা গামা একজন মুসলিমের বেশে মোজাম্বিকের সুলতানের শরণাপন্ন হন৷ কিন্তু তিনি সুলতানকে সন্তোষজনক উপহার সামগ্রী প্রদানে ব্যর্থ হওয়ায় স্থানীয় বাসিন্দারা দা গামা ও তার দলের প্রতি সন্দেহ পোষণ করে৷ অবশেষে একটা আক্ৰমণাত্মক দলের তাড়া খেয়ে সবাই পালাতে বাধ্য হয়৷ তবে যাওয়ার সময় প্রতিশোধস্বরূপ দা গামা শহরে গুলিবর্ষণ করে যান৷Vasco da Gamma Seeks Sea Route to India , Oldnewspublishing.com. Retrieved 8 July 2006. মোম্বাছা আধুনিক কেনিয়ার কাছে, সমুদ্রযাত্রায় তারা জলদস্যুতার পথ অবলম্বন করত, এবং কোন রকম ভারি কামান ছাড়া নিরস্র আরব বাণিজ্যিক জাহাজে লুটপাট করত। পর্তুগীজরা হচ্ছে প্ৰথম ইউরোপীয় যারা ১৪৯৮ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ১৩ এপ্রিল এর মধ্যে মোম্বাসা বন্দরের পরিচয় পায়৷ কিন্তু তারা স্থানীয় লোকের প্রতিশোধের বলি হয়ে পলায়ন করে। মালিন্দী ভাস্কো দা গামা উত্তরে যাত্রা অব্যাহত রেখে ১৪৯৮ সালের ১৪ এপ্রিল মালিন্দী বন্দরে এসে উপস্থিত হন- যার তৎকালীন নেতা মোম্বাসার সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত ছিলেন- সেখানে তারা ভারতীয় ব্যবসায়ীদের প্রামাণ্য দেখা পান৷ দা গামা এবং তাঁর সহযোগীরা সেখানে একজন নৌপরিচালক খোঁজে পায় যার ভারতের দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলের উপকূল, কালিকটে যাবার জন্য অনুকূল মৌসুমী বায়ু সম্বন্ধে জ্ঞান ছিল৷ এই নৌপরিচালকের পরিচয় সম্পর্কে অনেক মতভেদ আছে- কেউ বলেন খ্রিস্টান, কেউ মুসলিম কেউবা আবার গুজরাটি লোক বলেন৷ একটি প্রচলিত কাহিনী মতে এই নৌপরিচালক ছিলেন আরবের মহান নাবিক ইবনে মজিদ, কিন্তু অনেকে এই কাহিনী মানতে নারায , বরং তারা মনে করেন তিনি ঐ সময়টাতে ঐ উপকূলে থাকার কথা না৷. এমনকি তৎকালীন কোন পর্তুগীজ ঐতিহাসিক ইবনে মজিদের নাম উল্লেখ করেন নি। ১৪৯৮ সালের ২৪এপ্রিল দা গামা দলবলসমেত মালিন্দী থেকে ভারত অভিমুখে রাওনা হন৷ কালিকট,ভারত thumb|left|১৮৫০ এর ইস্পাতে খোঁদাই—জামোরিনের সাথে ভাস্কো দা গামার সাক্ষাৎ কে প্রদর্শন করছে thumb|upright|ভাস্কো দা গামা কালিকট অবতরণ করেন,২০ মে ১৪৯৮ সালে thumb|কাপ্পাড, কালিকটের নিকটবর্তী thumb|কাপ্পাডের সমুদ্রসৈকত ১৪৯৮ সালের ২০ মে ভাস্কো দা গামা নৌবহরসহ কালিকটের নিকটবর্তী কাপ্পাডুতে এসে উপস্থিত হন৷ কালিকটের রাজা সামুদিরি (জামরিণ) সেইসময়ে তার দ্বিতীয় রাজধানী পোন্নানিতে ছিলেন, তবে বিদেশী নৌবহর আসার খবর শুনে সেখান থেকে তিনি কালিকটে ফিরে আসেন৷ কমপক্ষে তিন হাজার সশস্র নায়ের বাহিনীর বৃহৎ শোভাযাত্রার মাধ্যমে জাহাজের নাবিকদের ঐতিহ্যগতভাবে অভ্যর্থনা জানানো হয়, কিন্তু জামরিনের সাথে সাক্ষাৎ কোন রকম সুসম্পর্ক গড়তে ব্যর্থ হয়৷ ‘’দা গামা’’ ডোম ম্যানুয়েল এর কাছ থেকে জামরিনকে উজ্জ্বল লাল কাপড়ের চারটি জোব্বা, ছয়টি টুপি, চার ধরনের প্রবাল, বারটি আলমাসার, সাতটি পিতলের পাত্রসহ একটি বাক্স, এক সিন্দুক চিনি, দুই ব্যারেল (পিপা) তেল এবং এক পিপা মধু উপহার স্বরূপ প্রেরণ করেন। এসব উপঢৌকনকে তাচ্ছিল্য করা হয়, এবং সম্রাটের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে ব্যর্থ হয়। কারণ জামরিনের প্রজাবর্গ উপহার তালিকায় সোনা বা রোপা না দেখে বিস্মিত হয়৷ একজন মুসলিম সওঁদাগর দা গামাকে প্ৰতিপক্ষ বলে ভাবেন এবং সেইসাথে পরামর্শ দেন যে দা গামা কোন রাজ প্ৰতিনিধি নয় বরং সে একজন জলদস্যু।Castaneda, Herman Lopes de, The First Book of the Historie of the Discoveries and Conquests of the East India by the Portingals, London, 1582, in Kerr, Robert (ed.) A General History and Collection of Voyages and Travels Vol. II, London, 1811. ভাস্কো দা গামা ভারতে ব্যবসায় করার জন্যে অনুমতি চাইলে সম্ৰাট প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার কাছ থেকে জানানো হয় যে ভারতে ব্যবসায় করতে হলে অন্যান্য ব্যবসায়ীদের মতো কর হিসেবে সোনা দিতে হবে৷ এই কথায় ক্ষুণ্ণ হয়ে দা গামা কয়েকজন নায়ার এবং ষোলজন জেলে কে জোর-জবরদস্তি করে ধরে নিয়ে যান৷M.G.S. Narayanan, Calicut: The City of Truth (2006) Calicut University Publications (The incident is mentioned by Camoes in The Lusiads, wherein it is stated that the Zamorin "showed no signs of treachery" and that "on the other hand, da Gama's conduct in carrying off the five men he had entrapped on board his ships is indefensible."). অনেক যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকা স্বত্বেও, দা গামার সমুদ্রাভিযান সফল হয়ছিল,প্রত্যাবর্তন কালে জাহাজে যেসব মালামাল ছিল তার মূল্য ছিল অভিযানের খরচের ষাট গুন। প্রত্যাবর্তন ১৪৯৮ সালের ২৯ আগস্ট কালিকট বন্দর থেকে প্রত্যাবর্তন যাত্রা করেন৷ ঐসময় তিনি অনুকূল মৌসুমী বায়ুর জ্ঞান অগ্রাহ্য করে দেশের পথে পাল তুলেন, যা তখনও ডাঙ্গার দিকে প্রবাহিত হচ্ছিল৷ তাদের নৌবহর প্রাথমিক পর্যায়ে ভারতের উপকূলে উত্তর দিক বরাবর খানিকটা যাত্রা করে, পরবর্তীতে আনজেদিভা দ্বীপে নোঙ্গর করে। অবশেষে ঐবছর ৩ অক্টোবর তাদের নৌবহর ভারত মহাসাগর পাড়ি দেয়৷ তবে ঐসময়ে যেহেতু শীতকালীন মৌসুমী জলবায়ু বিরাজ করছিল, সেজন্যে তাদের যাত্রা চরম দুর্দশায় পতিত হয়। অনুকূল মৌসুমী বায়ু থাকায় ভারত মহাসাগর পাড়ি দিতে যেখানে তাদের মাত্র ২৩ দিন সময় লেগেছিল, সেখানে বায়ুর প্রতিকূলে তাদের ফিরে যেতে ১৩২ দিন সময় লাগে৷ ১৪৯৯ সালের ২ জানুয়ারিতে, মোগাদিশুর উপকূলীয় শহর সোমালি পার হবার সময় দা গামা স্থলভাগের দেখা পান,যা আফ্রিকা শৃঙ্গের তৎকালীন আজুরান সম্রাটের অধীনে ছিল। তাদের নৌবহর কোথাও না থামিয়ে তারা যাত্রা অব্যাহত রাখে৷ তাদের একজন অজ্ঞাত দিনলিপি লেখকের কাছ থেকে জানা যায় যে মোগাদিশুতে তখন চার বা পাঁচতলা বাড়িঘর,সুদৃশ্য প্রাসাদ এবং বহু বেলনাকৃতির মিনারবিশিষ্ট মসজিদ ছিলDa Gama's First Voyage pg.88.৷ ভাস্কো দা গামার নৌবহর ১৪৯৯ সালের ৭ জানুয়ারি মালিন্দী এসে উপস্থিত হলেও ইতোমধ্যে তাদের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পরেছিল৷ প্রায় অর্ধ সংখ্যক জাহাজকর্মীর মৃত্যু ঘটেছিল এবং বাকীরা স্কার্ভি রোগে আক্রান্ত হয়ে পড়েছিল৷ পর্যাপ্ত জাহাজকর্মী না থাকায় তাদের তিনটি জাহাজ পরিচালনা করা অসুবিধা হয়ে পড়ে৷ সেজন্যে সাঁও রাফায়েল নামের জাহাজটি পূর্ব আফ্রিকার উপকূলে ডুবিয়ে দিতে আদেশ দেয়া হয়৷ এবং তিনটি জাহাজের কর্মীদের দুটি জাহাজে, সাঁও গ্যাব্রিয়েল এবং বেরিও'' তে ভাগ করে দেয়া হয়৷ এতে জাহাজ স্বচ্ছন্দে চলতে থাকে৷ মার্চের শুরুতেই, তারা মোসেল উপসাগরে এসে পৌঁছে, এবং ২০ মার্চ তারা গুড হোপ অন্তরীপ অতিক্রম করে। ২৫ এপ্রিল তারা পশ্চিম আফ্রিকার উপকূলে এসে উপস্থিত হয়৷ thumb|left|ভাস্কো দা গামা স্তম্ব, মালিন্দী, প্রত্যাবর্তন যাত্রা ঐ সমুদ্রযাত্রার দৈনন্দিন লিখিত বিবরণী আকস্মিকভাবে এখানে থেমে যায়। অন্যান্য সূত্রের বরাত থেকে জানা যায়, তারা কেপ ভার্ডি পর্যন্ত অগ্রসর হয়, যেখান থেকে নিকোলাউ কোয়েলহো দ্বারা পরিচালিত “বেরিও” নামের জাহাজটি “ভাস্কো দা গামা”র “সাঁও গেব্রিয়েল” এর থেকে পৃথক হয়ে পরে; এবং নিজে থেকেই চলতে শুরু করে।Subrahmanyam, 1997, p. 149. ১৪৯৯ সালের ১০ জুলাই “বেরিও” লিসবনে এসে পৌঁছে এবং নিকোলাউ কোয়েলহো রাজা প্রথম ম্যানুয়েল এবং রাজকীয় আদালত কে ব্যক্তিগত বার্তা পাঠান এবং পরবর্তীতে সিন্ত্রায় একত্রীত হন। ঐ সময়ে, কেপ ভার্ডি তে ফিরার সময়, দা গামার ভাই পাউলো দা গামা ভীষণভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে। দা গামা তার ভাইয়ের সাথে সান্তিয়াগো দ্বীপে কিছুদিন থাকেন এবং জাহাজের কেরাণী “জোয়াও দে সাঁ” কে “সাঁও গেব্রিয়েল” এর সাথে দেশে পাঠিয়ে দেন৷ জুলাইয়ের শেষ বা আগস্টের প্রথম দিকে সাঁও গেব্রিয়েল লিসবনে গিয়ে উপস্থিত হয়৷ গামা এবং তার অসুস্থ ভাই একটি গিনি হাল্কা দ্রুতগামী জাহাজে করে পর্তুগালের উদ্দেশ্যে রওয়ানা হন যদিও যাত্রাপথে তার ভাইয়ের মৃত্যু হয়৷ দা গামা তার ভাইকে সমাধিস্থ করার জন্য এজরেস এ অবতরণ করেন, এবং শোক প্রকাশের জন্য সেখানে কিছুদিন সময় অতিবাহিত করেন৷ অবশেষে তিনি একটি এজোরিয়ান হাল্কা দ্রুতগামী জাহাজে করে প্রস্থান করেন এবং ১৪৯৯ সালের ২৯শে আগস্টে লিসবনে এসে উপস্থিত হন(ব্যারোস এর মতানুযায়ী),João de Barros, Da Asia, Dec. I, Lib. IV, c.11, p. 370. বা সেপ্টেম্বরের শুরুর দিকে (৮ বা ১৮ তারিখে, অন্য একটি সূত্রের থেকে)। দা গামাকে দেশের মাটিতে বীরের মতো স্বাগত জানিয়ে,সন্মানের সাথে,শোভাযাত্রা এবং রাষ্ট্রীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করে বরণ করা হয়। রাজা ম্যানুয়েল দুটি পত্রে ভাস্কো দা গামার প্রথম সমুদ্রযাত্রার বর্ণনা দেন, তার জাহাজগুলো ফিরে আসার পরপরই, জুলাই এবং আগস্ট এর মধ্যে ১৪৯৯ সালে। গিরলামো সারনিগিও তিনটি পত্রে দা গামার প্রথম সমুদ্রযাত্রার বর্ণনা করেন তার যাত্রা থেকে প্রত্যাবর্তনের পরপরই। পুরস্কার এবং সন্মাননা thumb|ভাস্কো দা গামার স্বাক্ষর ১৪৯৯ সালের ডিসেম্বর মাসে, ভাস্কো দা গামাকে পর্তুগালের রাজা প্রথম ম্যানুয়েল সিনেস শহরটি বংশগত জায়গীর হিসেবে পুরস্কার প্রদান করেন, যেখানে তার পিতা ইস্তাবাও দা গামা একদা কমেন্ডা হিসেবে নিযুক্ত ছিলেন৷ সিনেস শহরটি অর্ডার অব সান্তিয়াগোর অধীনে থাকায় এটা পেতে তার জন্য জটিল হয়ে পড়ে। কিন্তু সেই শহরটি অর্ডার অব সান্তিয়াগোর প্রধান জর্জ দে লেনকেষ্ট্রির পুরস্কার হিসেবে অনুমোদন করতে সমস্যা ছিলনা, যদিও দা গামা, লেনকেষ্ট্রির একজন সান্তিয়াগো সদস্য এবং খুব অন্তরঙ্গ ছিলেন।Subrahmanyam, 1997, p. 168.৷ কিন্তু প্রকৃত পক্ষে রাজা সিনেস শহরটি পুরস্কার হিসেবে প্রদান করেন, যা নীতির ঊর্ধ্বে লেনকেষ্ট্রিকে প্ররোচিত করেছিল যদিও রাজা অর্ডারের সম্পত্তি অন্যান্য অনুদান হিসেবে দিয়ে দেন। দা গামা পরবর্তী বছরগুলো সিনেস শহরটির দায়িত্ব নিতে অতিবাহিত করেন,এই প্রচেষ্টা তাকে লেনকেষ্ট্রির কাছ থেকে বিচ্ছিন্ন করে রেখেছিল এমনকি দা গামা তার প্রিয় অর্ডার অব সান্তিয়াগো পরিত্যাগ করেন, যা তার অর্ডার অব খ্রিস্ট-এর প্রতিদ্বন্দ্বীকে ১৫০৭ সালে তাড়িত করে। দ্বিতীয় যাত্রা thumb|left| ভারতের মালাবার উপকূল, ১৫০০ খ্রীঃ, ভাস্কো দা গামার ৪র্থ পর্তুগীজ ভারতীয় নৌবহর প্রদর্শন করছে , ১৫০২ খ্রীঃ ১৫০০ সালের দ্বিতীয় পর্তুগীজ ভারতীয় নৌবহর অভিযানের নেতৃত্ব দেন পেড্রো আলভারেস কেব্রেল, যে অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল কালিকটের সম্রাট জামরিণের সাথে চুক্তি করে শহরটিতে একটি কারখানা স্থাপন করা৷ যাহোক, পেড্রো আলভারেস কেব্রেল আরব ব্যবসায়ীদের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়৷ যার ফলশ্রুতিতে কারখানাতে থাকা সত্তরজন পর্তুগীজের মৃত্যু হয়৷ এই ঘটনায় জামরিণের নিন্দা করে প্রতিশোধস্বরূপ পেড্রো আলভারেস কেব্রেল শহরটিতে বোমাবর্ষণ করে ৷ এভাবে পর্তুগাল এবং কালিকটের মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে। ১৫০২ সালে ভাস্কো দা গামা চতুর্থ পর্তুগীজ ভারতীয় নৌবহর অভিযানে যোগদান করতে রাজকীয় পত্র পাঠায়৷ এই অভিযানের উদ্দেশ্য ছিল কালিকটের রাজা জামরিণের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ নেয়া এবং পর্তুগীজদের শর্তে আত্মসমৰ্পণ করার জন্য চাপ দেয়া৷ অস্ত্র-শস্ত্রে সুসজ্জিত পনেরটি জাহাজ এবং আঠশত লোক নিয়ে ১৫০২ সালের ১২ ফেব্রুয়ারি তারা লিসবন থেকে যাত্রা করে৷ তার চাচাত ভাই (এস্তাবাও দা গামা, আইরেস দা গামার পুত্র)এপ্রিল মাসে আরো পাঁচটি জাহাজ নিয়ে ভারত অভিমুখে রাওনা হয়, যা ভারত মহাসাগরে এসে তাদের সাথে মিলিত হয়৷ চতুর্থ নৌবহরটি ছিল দা গামা পরিবারের যথার্থ কার্যসিদ্ধ বিষয়। তার দুই চাচা, ভিসেন্ট সড্রে এবং ব্রাস সড্রে, ভারত মহাসাগরে জাহাজের নজরদারির উপর আদেশ দিতে পূর্ব-মনোনীত ছিলেন, যেখানে তার শালা আল্ভারো দা আটাইদে (ক্যাটেরিনার ভাই) এবং লোপো মেন্দেস দা ভাস্কন্সেলস (বোনের স্বামী) প্রধান জাহাজের ক্যাপ্টেন ছিল। ১৫০২ সালের অক্টোবরে তাদের বিশাল নৌবহরটি ভারতে এসে উপস্থিত হলে সেই সময়ে মক্কা থেকে মিরি নামের একটি তীর্থযাত্রিতে পরিপূর্ণ জাহাজে আক্রমণ চালিয়ে দা গামা সমস্ত যাত্রীদের মুক্ত জলাশয়ে হত্যা করেনSubrahmanyam, 1997, p. 205.৷ তার পর তিনি কালিকটে পেড্রো আলভারেস কেব্রেলের করা চুক্তির সংশোধন করেন৷ যখন জামরিণ নতুন চুক্তিতে সই করার ইচ্ছা পোষণ করেন Dana Thompson, Felicity Ruiz, Michelle Mejiak; 15 December 1998. Retrieved 8 July 2006.৷ কিন্তু দা গামা কোনো সিদ্ধান্তে আসার আগে শহর থেকে সকল মুসলিমদের বের করে দেবার জন্য কালিকটের হিন্দু রাজার কাছে দাবী জানালে তা খারিজ করা হয়৷ ফলশ্রুতিতে পর্তুগীজ যুদ্ধ জাহাজ সমুদ্র উপকূল থেকে প্রায় দুদিন ধরে শহরটিতে প্রচণ্ড গোলাবর্ষণ করে৷ যার ফলে শহরটিতে বিস্তর ক্ষয়ক্ষতি হয়৷ তদুপরি দা গামা কিছু ভারতীয় জাহাজ আটক করে কর্মীদের হাত,নাক,কান ইত্যাদি কেটে দেয়, অপমানের চিহ্ন সরূপ জামরিণের নিকট তাদের প্রেরণ করা হয়৷Sreedhara Menon. A. A Survey of Kerala History(1967), p. 152. D. C. Books Kottayam. thumb|right|দা গামার জাহাজের চিত্রাঙ্কন তীৰ্থযাত্ৰী জাহাজের ঘটনা দ্বিতীয় ভ্রমণের সময় দা গামা ব্যবসায়ী এবং স্থানীয় লোকদের প্রতি নিষ্ঠুরতা প্রদর্শন করেছিলেন, যা ভারতে তার কুখ্যাতি ছড়িয়ে দেয়।M. G. S. Narayanan, Calicut: The City of Truth (2006) Calicut University Publications.A. Sreedhara Menon. A Survey of Kerala History (1967), D. C. Books Kottayam. তার দ্বিতীয় সমুদ্র যাত্রার সময় মাদায়ি-তে তিনি কালিকট থেকে মক্কায় যেতে থাকা একটি জাহাজ আটক করেন৷ প্রত্যক্ষদর্শী থম লোপেজ এবং ঘটনাপঞ্জী লেখক গ্যাস্পার করিয়া বিশদভাবে বর্ণনা করেন যে, জাহাজটিতে থাকা চারশ যাত্রীর মধ্যে পঞ্চাশ জন মহিলা ছিল৷ গামা জাহাজটিতে লুটপাত চালায় এবং জাহাজের যাত্রী, মালিক এবং মিশরীয় একজন রাষ্ট্রদূত সহ সকলকে জীবন্ত জ্বালিয়ে হত্যা করে৷ তারা তাদের সম্পদের বিনিময়ে মুক্তিপণ চেয়েছিল যা দিয়ে ফেজ রাজ্যের সকল খ্রিস্টান ক্রীতদাসদের মুক্ত করে আনা এবং আরো অনেক কিছু করা যেত, তবুও তাদের নিষ্কৃতি দেয়া হয়নি। দা গামা দেখেছিল যে মহিলারা তাদের স্বর্ণালংকার এবং তাদের বাচ্চাদের ধরে প্রাণভিক্ষা চাইছিলNambiar O.K, The Kunjalis- Admirals of Calicut, Bombay, 1963.৷ কালিকট থেকে মুসলিমদের বিতারনের জন্য হিন্দু জামরিনের কাছে দাবির পর, পরবর্তীতে দা গামার কাছে তালাপ্পানা নাম্বুথিরি নামের একজন উচ্চপদস্থ ব্রাহ্মণকে আলোচনার জন্য পাঠানো হয়। দা গামার ব্রাহ্মণকে গুপ্তচর বলে সন্দেহ করে তার ঠোঁট এবং কান কেটে সেই জায়গায় কুকুরের কান লাগিয়ে দেবার নির্দেশ দেন৷ বিরতি এরপরে প্রায় দুই দশক দা গামা নীরবে নির্জনে সময় অতিবাহিত করেন, এবং সবধরনের ভারতীয় রাজকীয় কাজ থেকে দূরে সরে থাকেন। ম্যানুয়েল প্রথম-এর সহায়তায় তার প্রচেষ্টা খুব কমই স্বীকার করা হয়ে থাকে। তৃতীয় ভারত অভিযান এবং মৃত্যু ১৫২১ সালে রাজা প্রথম ম্যানুয়েলের মৃত্যুর পর তার পুত্র এবং উত্তরসূরি, পর্তুগালের তৃতীয় জন ক্ষমতায় এসে বিদেশের সাথে সামুদ্রিক অভিযান চালু রাখার সিদ্ধান্ত নেন। এজন্য তিনি পুরাতন আলবুকারক ক্লিক এর থেকে সরে এসে নতুন করে যাত্রার পদক্ষেপ নেন। ফলে রাজনৈতিক অভিজ্ঞ ভাস্কো দা গামাকে নতুন রাজার নিয়োগদাতা এবং কলাকুশলী হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ উপদেষ্টার দায়িত্ব দেবার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়৷ পূর্বপুরুষ বিবাহ এবং সন্তানসন্ততি ভাস্কো দা গামা এবং তার স্ত্রী, ক্যাটেরিনা দি এটেইদের ছয় পুত্র ও এক কন্যা সন্তান ছিল:See also Diogo do Couto (Decadas de Asia, Dec. IV, Lib. 8, c.2); Teixeira de Aragão p. 15-16, and Castanhoso (1898: p. viiff.). ডোম ফ্রান্সিস্কো দা গামা, তিনি দ্বিতীয় কাউন্ট অব ভিদিগুয়েরা হিসেবে তার বাবার বংশানুক্রমিক উপাধি বহন করেন এবং "ভারত, আরব ও পারস্য সাগরে দ্বিতীয় নৌসেনাপতির" দায়িত্বে ছিলেন। তিনি পর্তুগালে বসবাস করতেন। ডোম এস্তেবাও দা গামা, ১৫২৪-সালে তার ভারতীয় প্রহরী সেনাপতি পদে অকালে সময় শেষ হয়, পরে তিনি তিন বছরের জন্য মালাক্কার সেনাপতি নিযুক্ত হন, এবং ১৫৩৪ থেকে ১৫৩৯ পর্যন্ত ছিলেন (তার ভাই পাউলোর কার্যকালীন শেষ দুই বছর সহ)। পরবর্তী বছর তিনি ১৫৪০ থেকে ১৫৪২ পর্যন্ত ভারতের ১১তম গভর্নর নিযুক্ত হন। ডোম পাউলো দা গামা, ১৫৩৩-৩৪ মালাক্কার সেনাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মালাক্কার নৌবাহিনীর এক কর্মকাণ্ডে নিহত হন। ডোম ক্রিস্টোভাউ দা গামা, ১৫৩৮-৪০ মালাক্কার নৌবহরের সেনাপতির দায়িত্বে ছিলেন। তিনি মালাক্কা জয় করার জন্য নিযুক্ত হন, কিন্তু ১৫৪২ সালের ইথিওপিয়ার আদাল যুদ্ধে আহমেদ ইবনে ইব্রাহীমের হয়ে কাজ করতে হয়। ডোম পেড্রো দা সিলভা দা গামা, ১৫৪৮ থেকে ১৫৫২ পর্যন্ত মালাক্কার সেনাপতির দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। ডোম আলভারো ডি’আটাইদে দা গামা মালাক্কার নৌবহরের সেনাপতির দায়িত্বে নিযুক্ত হন ১৫৪০ সালে। তিনি ১৫৫২ থেকে ১৫৫৪ পর্যন্ত মালাক্কার সেনাপতির দায়িত্বে নিযুক্ত ছিলেন। ডনা ইসাবেল ডি’আটাইদে দা গামা, তার একমাত্র কন্যা, ইগনাশিও দি নরনহা-র সাথে বিয়ে হয়, প্রথম কাউন্ট অব লিনহারেস এর পুত্র। ১৭৪৭ সালে তার পুরুষ পক্ষের বংশ পরম্পরার অবসান ঘটে, যদিও বর্তমানে তার কন্যা পক্ষের লোকেরা তার উপাধি বহন করছে। বহিঃসংযোগ Vasco da Gama , prominentpeople.co.za Vasco da Gama's Round Africa to India , fordham.edu Vasco da Gama web tutorial with animated maps, ucalgary.ca Brief description of Vasco da Gama's journeys, sify.com তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:১৪৬৯-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৫২৪-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:পর্তুগিজ ভারতের ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:ম্যালেরিয়ায় মৃত্য বিষয়শ্রেণী:পর্তুগিজ রোমান ক্যাথলিক বিষয়শ্রেণী:পর্তুগিজ অভিযাত্রী বিষয়শ্রেণী:এশিয়ার অভিযাত্রী বিষয়শ্রেণী:ভারতের অভিযাত্রী বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার অভিযাত্রী বিষয়শ্রেণী:ভারতে সংক্রামক রোগে মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:১৫শ শতাব্দীর অভিযাত্রী বিষয়শ্রেণী:১৫শ শতাব্দীর পর্তুগিজ ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:১৫শ শতাব্দীর রোমান ক্যাথলিক বিষয়শ্রেণী:দক্ষিণ আফ্রিকার সামুদ্রিক ইতিহাস বিষয়শ্রেণী:পর্তুগালের সামুদ্রিক ইতিহাস বিষয়শ্রেণী:১৪৬০-এর দশকে জন্ম বিষয়শ্রেণী:গোয়ার ইতিহাস
বংশাণুবিজ্ঞান
https://bn.wikipedia.org/wiki/বংশাণুবিজ্ঞান
বংশাণুবিজ্ঞান হল বংশাণু, বংশগতিক বৈশিষ্ট্য এবং এক জীব থেকে আরেক জীবের জন্মগত চারিত্রিক সাযুজ্য ও পার্থক্য সম্বন্ধীয় বিজ্ঞান। বংশাণুবিজ্ঞানের ইংরেজি পরিভাষা হল "জেনেটিকস", যা বিজ্ঞানী উইলিয়াম বেটসন ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে প্রবর্তন করেন। জীবমাত্রই যে তার পিতা-মাতার বৈশিষ্ট্য আহরণ করে তা প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকেই মানুষের জানা এবং নির্বাচিত প্রজননের মাধ্যমে তারা শস্য ও গৃহপালিত পশুর মধ্যে কাঙ্ক্ষিত গুণাবলীর সমাবেশ ঘটিয়েছেন। তবে বংশগতির মূলসূত্র অনুসন্ধানে অভীষ্ট আধুনিক বংশাণুবিজ্ঞানের বয়স খুব বেশি নয়। ঊনবিংশ শতাব্দীতে অস্ট্রিয়ান ধর্মযাজক গ্রেগর মেন্ডেলের গবেষণার মধ্য দিয়ে এই বিজ্ঞানের আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু হয়। তখনো মানুষ বংশগতির গাঠনিক ভিত্তি সম্বন্ধে খুব বেশি অবহিত ছিল না। তদসত্ত্বেও মেন্ডেল তার পর্যবেক্ষণ থেকে ধারণা করেছিলেন পিতা-মাতা থেকে চারিত্রিক বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্মে সঞ্চারিত হয় বংশগতির কিছু বিচ্ছিন্ন একক দ্বারা, যাদের পরবর্তীতে বংশাণু হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। বংশাণু ডিএনএ'র নির্দিষ্ট স্থানে অবস্থান করে। ডিএনএ হল এমন একটি অণু যা কিনা চারটি ভিন্ন প্রকৃতির নিউক্লিওটাইডে তৈরি, যাদের বিন্যাসই কোনো অর্গানিজমের বংশাণুগত বৈশিষ্ট্যাদি নির্ধারণ করে দেয়। ডিএনএ সাধারণতঃ দ্বি-সর্পিল তন্তুর ন্যায় বিন্যাসিত থাকে ; যেখানে কোন একটি নিউক্লিওটাইড অপর তন্তুতে অবস্থিত নিউক্লিওটাইডের পরিপূরক। প্রতিটি তন্তুই ডিএনএ প্রতিলিপিকরণের সময় তার পরিপূরক তন্তুর জন্যে ছাঁচ হিসাবে কাজ করে, যা কি-না উত্তরাধিকার সূত্রে বংশাণু প্রতিলিপিকরণের ভৌত পদ্ধতি। বংশাণুর নিউক্লিওটাইডের পরম্পরা অনুযায়ী জীবকোষ অ্যামিনো অ্যাসিড তৈরি করে। অ্যামিনো অ্যাসিড থেকে দেহসার বা প্রোটিন উৎপন্ন হয় - প্রোটিনে অ্যামিনো অ্যাসিডের ক্রম আর বংশাণুতে নিউক্লিওটাইডের ক্রম অভিন্ন রকম হয়ে থাকে। নিউক্লিওটাইডের ক্রম আর অ্যামিনো অ্যাসিডের ক্রমের এই সম্পর্ককে বংশগতীয় সঙ্কেত (জেনেটিক কোড) বলে। প্রোটিনে অবস্থিত অ্যামিনো অ্যাসিড নির্ধারণ করে প্রোটিনের ত্রি-মাত্রিক গঠন কী-রূপ হবে; আর এর গঠন প্রোটিনের কাজ কী হবে তা নির্ধারণ করে। বংশাণুতে অবস্থিত ডিএনএ'র একটি ছোট্ট পরিবর্তন প্রোটিন গঠনকারী অ্যামিনো অ্যাসিডের আকার ও কাজে বড় ধরনের পরিবর্তন সৃষ্টি করতে পারে, যা কিনা ঐ কোষ ও সম্পূর্ণ জীবদেহে নাটকীয় পরিবর্তন আনতে পারে। যদিও বংশাণুবিজ্ঞান কোন জীবের বাহ্যিক গঠন ও আচরণ নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে, বংশাণুবিজ্ঞান আর জীবসত্ত্বার অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে তার বৈশিষ্ট্য নির্ধারিত হয়। যেমন, যদিও বংশাণু কোন ব্যক্তির উচ্চতা নির্ধারণ করে, তবু তার বাল্যকালের স্বাস্থ্য ও পুষ্টির ব্যাপারটিও এতে বড় প্রভাব ফেলে। thumb|right|150px|upright|ডিএনএ, বংশগতির আণবিক একক। ডিএনএ'র প্রতিটি তন্তু নিউক্লিওটাইড শৃংখলে তৈরি, যা কিনা দেখতে অনেকটা সর্পিল সিঁড়ির মত ইতিহাস right|thumb|200px|Morgan's observation of sex-linked inheritance of a mutation causing white eyes in Drosophila led him to the hypothesis that genes are located upon chromosomes. ১৮শ শতকের মাঝামাঝি সময়ে মেন্ডেলের তত্ত্বগত ও ব্যবহারিক কাজের মাধ্যমে বংশাণুবিজ্ঞানের সূচনা হলেও তার আগেও বংশবৈশিষ্ট্য সম্বন্ধে কিছু ধারণা প্রচলিত ছিলো। মিশ্র উত্তরাধিকার নামক একটি তত্ত্ব মেন্ডেলের আমলে খুব জনপ্রিয় ছিল। এ সরল তত্ত্ব অনুযায়ী কোন জীব তার বাবা-মার বৈশিষ্ট্য সমূহের যথাযথ মিশ্রণের অধিকারী হয়। মেন্ডেলের কাজ এই তত্ত্বকে ভুল প্রমাণিত করে এবং দেখায় যে চরিত্র বৈশিষ্ট্য বংশাণু মিশ্রণ নয়, বরং ভিন্ন ভিন্ন বংশাণুর সমন্বয়। সে সময় আরেকটি মতবাদ প্রচলিত ছিল: পিতা-মাতার শক্তিশালী বংশাণুগুলোই তাদের উত্তরপ্রজন্ম পরিগ্রহ করে। এই তত্ত্বটি (যা কিনা জ্যঁ বাপ্তিস্ত লামার্কের সাথে জড়িত)বর্তমানে ভুল প্রমাণিত হয়েছে: কোন একক সত্ত্বার বৈশিষ্ট্য ও অভিজ্ঞতার ওপর তার ভবিষ্যত প্রজন্মে বংশাণুর অতিক্রমণ নির্ভর করে না। Lamarck, J-B (2008). In Encyclopædia Britannica. Retrieved from Encyclopædia Britannica Online on 2008-03-16. অন্যান্য তত্ত্বের মধ্যে রয়েছে চার্লস ডারউইনের প্যানজেনেসিস (যার মধ্যে উত্তরাধিকার ও আহরণ দুটো প্রক্রিয়াই ছিল) এবং ফ্রান্সিস গ্যালটনের ব্যক্তিগত ও উত্তরাধিকারে প্যানজেনেসিসের পুনর্বিন্যাস।Peter J. Bowler, The Mendelian Revolution: The Emergency of Hereditarian Concepts in Modern Science and Society (Baltimore: Johns Hopkins University Press, 1989): chapters 2 & 3. মেন্ডেলিয় ও চিরায়ত বংশাণুবিজ্ঞান আধুনিক বংশাণুবিজ্ঞানের সূচনাপর্ব অনুসন্ধান করলে দেখা যায় গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল নামক এক জার্মান-চেক অগাস্টিনিয়ান সন্ন্যাসী ও বিজ্ঞানী প্রথম উদ্ভিদে বংশবৈশিষ্ট্য প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করেন। তার নিবন্ধ "Versuche über Pflanzenhybriden" (উদ্ভিদ সঙ্করায়নের পরীক্ষা), যা তিনি ১৮৬৫ খ্রিষ্টাব্দে ব্রুনোর Naturforschender Verein (প্রকৃতি গবেষণা সমাজ)-এ উপস্থাপন করেন, তাতে তিনি নির্দিষ্ট কিছু মটরশুঁটি গাছের বৈশিষ্ট্যসমূহের বংশগতিগত উদ্ভব অনুসন্ধান করেন এবং তাদের গাণিতিকভাবে সূত্রাবদ্ধ করেন। (in English in 1901, J. R. Hortic. Soc. 26: 1–32) English translation available online যদিও বংশগতির এই বিন্যাস কেবল অল্প কিছু আচরণের ব্যাখ্যা দিতে পারত, এই তত্ত্বটির সাফল্য ছিল তা দেখায় বংশগতি কণাসদৃশ পদার্থে তৈরি এবং তা আহরণযোগ্য নয়। মেন্ডেলের কাজ ১৮৯০'র দশকের পূর্ব পর্যন্ত লোকচক্ষুর আড়ালেই রয়ে গিয়েছিল, তার মৃত্যুর পর একই সমস্যা নিয়ে গবেষণারত বিজ্ঞানীরা তার সূত্রগুলো পুনঃআবিষ্কার করেন। উইলিয়াম বেটসন, মেন্ডেলের কাজের একজন প্রস্তাবক, ১৯০৫ খ্রিষ্টাব্দে জেনেটিক্স শব্দটির প্রচলন করেন। genetics, n., Oxford English Dictionary, 3rd ed.. Note that the letter was to an Adam Sedgwick, a zoologist at Trinity College, Cambridge, not "Alan", and not to be confused with the renown British geologist, Adam Sedgwick, who lived some time earlier.(বংশাণুবিজ্ঞান শব্দটি এসেছে গ্রিক শব্দ জেনেসিস - γένεσις , "উৎপত্তি" থেকে এবং এই শব্দটির বিশেষ্য জেনো - γεννώ, "জন্ম দেওয়া" আগেই ১৮৬০ সালে জীববিজ্ঞানগত অর্থে ব্যবহার করা হয়।) genetic, adj., Oxford English Dictionary, 3rd ed. বেটসন ১৯০৬ সালে লন্ডনে অনুষ্ঠিত তৃতীয় আন্তর্জাতিক উদ্ভিদ সংকরায়ণ আলোচনাসভায় তার উদ্বোধনী বক্তৃতায় বংশগতিবিদ্যার অধ্যয়ন বোঝাতে বংশাণুবিজ্ঞান শব্দটি ব্যবহার করেন। Initially titled the "International Conference on Hybridisation and Plant Breeding", Wilks changed the title for publication as a result of Bateson's speech. মেন্ডেলের কাজের পুনঃআবিষ্কারের পর বিজ্ঞানীরা জীবকোষে বংশগতির বাহক বংশাণুসমূহের শনাক্তকরণের কাজ শুরু করেন। ১৯১০ খ্রিষ্টাব্দে টমাস হান্ট মর্গান ফ্রুট ফ্লাইতে সাদা চোখের সেক্স-লিংকড মিউটেশানের ওপর ভিত্তি করে দাবী করেন বংশাণু জীবকোষের অন্তর্গত ক্রোমোসোমে অবস্থান করে। ১৯১৩ খ্রিষ্টাব্দে তার ছাত্র আলফ্রেড স্টার্টেভান্ট বংশাণুগত লিংকেজ ব্যবহার করে দেখান বংশাণু ক্রোমোসোমে রৈখিকভাবে সাজানো থাকে। PDF from Electronic Scholarly Publishing আণবিক বংশাণুবিজ্ঞান বংশাণু ক্রোমোসোমে অবস্থিত এ বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া গেলেও বিজ্ঞানীরা জানতেন না ক্রোমোসমের দুই উপাদান প্রোটিন ও ডিএনএ-এর মধ্যে কোন উপাদানটি বংশবৈশিষ্ট্যেরে ধারক ও বাহক। ১৯২৮ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রেডেরিক গ্রিফিথ বংশাণুগত রূপান্তর আবিষ্কার করেন (বিস্তারিত: [গ্রিফিথের পরীক্ষা]): মৃত ব্যকটেরিয়া তার বংশাণুাটিক বস্তু জীবিত ব্যাকটেরিয়াতে পাঠিয়ে তাকে রূপান্তর করতে পারে। ষোল বছর পর ১৯৪৪ খ্রিষ্টাব্দে অসওয়াল্ড থিয়োডর এভারি, কলিন ম্যাকলিওড এবং ম্যাকলিন ম্যাককার্টি এই রূপান্তরের জন্যে দায়ী কণা হিসেবে ডিএনএকে শনাক্ত করেন। 35th anniversary reprint available ১৯৫২ খ্রিষ্টাব্দে হার্শলে-চেজের পরীক্ষণও প্রতিপাদন করে যে ডিএনএ-ই (প্রোটিন নয়) হল ভাইরাসের সেই জেনেটিক বস্তু যা কিনা ব্যাকটেরিয়াকে সংক্রমণ করে। এই প্রতিপাদন বংশবৈশিষ্ট্যের ধারক ও বাহক হিসেবে ডিএনএ'র ভূমিকা আরো নিশ্চিত করে। জেমস ডি. ওয়াটসন এবং ফ্রান্সিস ক্রিক ১৯৫৩ খ্রিষ্টাব্দে মরিস উইলকিন্স ও রোসালিন্ড ফ্রাঙ্কলিনের এক্স-রে ক্রিস্টালোগ্রাফি ব্যবহার করে করা কাজ, যা ডিএনএ সর্পিলাকার (অর্থাৎ কর্ক-স্ক্রূর মত) নির্ধারণ করে তা থেকে ডিএনএ'র গঠন উদ্‌ঘাটন করেন। তাদের দ্বি-সর্পিল মডেলে দুটো সুতোর মতো অংশ থাকে , যাতে একট সুতোর নিউক্লিওটাইডগুলো ভেতরের দিকে অপর সুতোয় থাকা নিজ-নিজ সম্পূরক নিউক্লিওটাইডের সাথে যুক্ত হয়, যা দেখতে অনেকটা প্যাঁচানো সিঁড়ির ধাপের মতো হয়। এই গঠন নির্দেশ করে যে বংশাণুগত তথ্য ডিএনএ'র সুতোয় নিউক্লিওটাইডের ক্রমের ওপর নির্ভর করে। এই মডেল ডিএনএ'র দ্বৈতকরণেরও (duplication) একটি সহজ ব্যাখ্যা দেয়: যদি সুতোগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় তবে পূর্বের সুতোর গঠন অনুসরণ করেই নতুন সম্পূরক সুতো তৈরি হয়। যদিও ডিএনএ'র গঠন থেকে বংশগতির ব্যাখ্যা প্রদান করা সম্ভব হয়, কিন্তু ডিএনএ কেমন করে কোষের আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে তা জানা সম্ভব হয়নি। পরবর্তী বছরগুলোতে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ কী করে প্রোটিন তৈরির কাজটি নিয়ন্ত্রণ করে তা বুঝতে চেষ্টা করেন। জানা যায় ডিএনএ ছাঁচ হিসেবে ব্যবহার করে কোষ অনুরুপ বার্তাবাহক আরএনএ (messenger RNA) (নিউক্লিওটাইড যুক্ত অণু, অনেকটা ডিএনএ'র মতো) তৈরি করে। বার্তাবাহক আরএনএ'র নিউক্লিওটাইড ক্রম থেকে প্রোটিনে অ্যামিনো অ্যাসিডের]] ক্রম তৈরি হয়; নিউক্লিওটাইড ও অ্যামিনো অ্যাসিডের ক্রমের মধ্যে এই রূপান্তরকে বংশগতীয় সঙ্কেত বলে। বংশাণুবিজ্ঞানের এই ব্যাপক অগ্রগতির পর নতুন গবেষণার স্বর্ণদুয়ার খুলে যায়। এদের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ একটি গবেষণা ছিলো ১৯৭৭ সালে ফ্রেডেরিক স্যাঙ্গারের ডিএনএ সিকুয়েন্সিং এর শৃংখল-পরিসমাপ্তি: এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিজ্ঞানীরা ডিএনএ অণুর নিউক্লিওটাইড অনুক্রম পড়তে সক্ষম হন। ১৯৮৩ সালে ক্যারি ব্যাংকস মুলিস পলিমারেজ শৃংখল বিক্রিয়া উদ্ভাবন করেন, যা কোন মিশ্রণ থেকে ডিএনএ'র নির্দিষ্ট অংশ আলাদা করার দ্রুত পথ দেখায়। মানব বংশাণুসমগ্র প্রজেক্ট এর সমন্বিত প্রচেষ্টা এবং পাশাপাশি সেলেরা বংশাণুসমগ্রিক্সের কাজ এবং অন্যান্য কৌশলের মাধ্যমে ২০০৩ সালে মানুষের বংশাণুসমগ্রের নীলনকশা তৈরির কাজ সম্পন্ন হয়। বংশগতির নানা দিক বিচ্ছিন্ন বংশগতি ও মেন্ডেলের সূত্র right|thumb|175px|A Punnett square depicting a cross between two pea plants heterozygous for purple (B) and white (b) blossoms সবচেয়ে প্রাথমিক স্তরে বংশ হতে বংশান্তরে জীবদেহে বৈশিষ্ট্য স্থানান্তরিত হয় বংশাণুর মাধ্যমে। Griffiths et al. (2000), Chapter 2 (Patterns of Inheritance): Introduction এই বৈশিষ্ট্যটি প্রথম আবিষ্কার করেন গ্রেগর মেন্ডেল, যখন তিনি মটরশুটিঁর বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য পরবর্তী প্রজন্মে পৃথক হয়ে যাওয়া পর্যবেক্ষণ করছিলেন। Griffiths et al. (2000), Chapter 2 (Patterns of Inheritance): Mendel's experiments ফুলের রঙ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করার সময় মেন্ডেল লক্ষ্য করেন যে মটরশুটিঁ ফুলের রঙ হয় সাদা নয়তো বেগুনি হয়, তবে এদের মাঝামাঝি কিছু হয় না। একই বংশাণুর এই ভিন্ন, বিছিন্ন রূপকে অ্যালিল বলে। মটরশুটিঁর ক্ষেত্রে, যা কিনা একটি ডিপ্লয়েড প্রজাতি, প্রতিট স্বতন্ত্র উদ্ভিদের প্রত্যেক বংশাণুর দুটি করে অ্যালিল আছে, যার প্রতিটি পিতা-মাতার কোন একজন থেকে এসেছে। http://www.ncbi.nlm.nih.gov/books/bv.fcgi?rid=iga.section.484 অনেক প্রজাতি, যার মধ্যে মানুষও আছে, বংশগতির এই রূপ অনুসরণ করে। ডিপ্লয়েড জীবে দুটি একই রকম অ্যালিল যুক্ত বংশাণুকে ওই বংশাণু লোকাসে হোমোজাইগাস বলে, আর ভিন্ন অ্যালিল যুক্ত বংশাণুকে হেটারোজাইগাস বলা হয়। কোন নির্দিষ্ট জীবের অ্যালিলগুচ্ছকে তার বংশাণুোটাইপ বলে, আর তার পর্যবেক্ষণযোগ্য বৈশিষ্ট্যসমূহকে তার ফিনোটাইপ বলে। কোন একটি বংশাণুতে হেটারোজাইগাস জীবের একটি বংশাণুকে সাধারণতঃ প্রকট বংশাণু বলা হয়, কারণ এর বৈশিষ্ট্যই ওই জীবের ফিনোটাইপে প্রাধান্য বিস্তার করে, অপরদিকে অন্য অ্যালিলটিকে প্রচ্ছন্ন বংশাণু বলে,কারণ তা ওই জীবটির ফিনোটাইপে প্রকাশিত হয় না। কিছু অ্যালিলে সম্পূর্ণ প্রকটতা দেখা যায় না, বরং তারা অসম্পূর্ণ প্রকটতা দেখায়, যাতে একটি মধ্যবর্তী ফিনোটাইপের সৃষ্টি হয়, অথবা সহপ্রকটতার সৃষ্টি হয়। Griffiths et al. (2000), Chapter 4 (Gene Interaction): Interactions between the alleles of one gene যখন এক জোড়া জীবে যৌন প্রজনন হয় তখন তাদের সন্তানাদি তাদের প্রত্যেকের দুটি অ্যালিল হতে একটি অ্যালিলের অধিকারী হয়। উত্তরাধিকারের এই বিচ্ছিন্নতা এবং অ্যালিলের আলাদা হয়ে যাবার এই ঘটনাটিকে মেন্ডেলের প্রথম সূত্র বা বিচ্ছিন্নতার সূত্র বলে। চিহ্ন ও রেখাচিত্র thumb|225px|বংশাণুগত পেডিগ্রি চার্ট কোন বৈশিষ্ট্যর বংশগতির প্যাটার্ন অনুসন্ধানে সাহায্য করে। বংশাণুবিজ্ঞানীরা বংশগতি বর্ণনা করতে ডায়াগ্রাম ও চার্ট ব্যবহার করেন। একটি বংশাণুকে একটি বর্ণ (অথবা একাধিক বর্ণ) দ্বারা প্রকাশ করা হয়-বড় হাতের বর্ণ প্রকট অ্যালিল নির্দেশ করে আর ছোট হাতের বর্ণ প্রচ্ছন্ন অ্যালিলকে নির্দেশ করে। অনেক সময় কোন বংশাণুর সাধারণ, নন-মিউট্যান্ট অ্যালিল বোঝাতে একটি "+" চিহ্ন ব্যবহার করা হয়। নিষেক ও প্রজনন সংক্রান্ত পরীক্ষণ গুলোতে (এবং বিশেষ করে মেন্ডেলের নিয়মগুলো নিয়ে আলোচনা করার সময়) পিতা-মাতাকে "P" প্রজন্ম দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এবং তাদের সন্তানাদিকে "F1" (প্রথম প্রজন্ম) দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। যখন "F1" প্রজন্ম পরস্পরের সাথে মিলিত হয়ে সন্তান উৎপাদন করে তখন তাকে "F2" (দ্বিতীয় প্রজন্ম) বলা হয়। সঙ্কর প্রজননের ফলাফল দেখাবার জন্যে ব্যবহৃত একটি জনপ্রিয় পদ্ধতি হল প্রুনেট বর্গ। মানুষের বংশাণুগত রোগ নিয়ে গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরা কোন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার বোঝাতে পেডিগ্রি চার্ট ব্যবহার করেন। Griffiths et al. (2000), Chapter 2 (Patterns of Inheritance): Human Genetics এই চার্ট থেকে কোন বংশতালিকায় একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের বংশগতি লক্ষ্য করা যায়। মানুষের বংশাণুগত রোগ নিয়ে গবেষণার সময় বিজ্ঞানীরা কোন চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার বোঝাতে পেডিগ্রি চার্ট ব্যবহার করেন। এই চার্ট থেকে কোন বংশতালিকায় একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্যের বংশগতি লক্ষ্য করা যায়। বহু সংখ্যক বংশাণুর মিথস্ক্রিয়া thumb|right|175px|মানুষের উচ্চতা একটি জটিল বংশাণুগত বৈশিষ্ট্য। ফ্রান্সিস গ্যালটনের ১৮৮৯ সালের তথ্য থেকে দেখা যাচ্ছে যে সন্তানাদির উচ্চতা তার পিতা-মাতার গড় উচ্চতার ফাংশন। এছাড়াও দেখা যায় বিভিন্ন সন্তানের উচ্চতা বিভিন্ন হয়, যা থেকে বলা যায় পরিবেশও উচ্চতা নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কোন জীবের হাজার হাজার বংশাণু থাকে, আর যৌন প্রজনন হওয়া জীবসমূহে এই বংশাণুসমূহের বিন্যাস সাধারণত পরস্পর স্বাধীনভাবে হয়। এই কথাটির মানে হল মটরশুঁটির হলুদ বা সবুজ রঙের অ্যালিলের উত্তরাধিকারের সাথে তার সাদা বা বেগুনি ফুলের উত্তরাধিকারের কোন সম্পর্ক নেই। এই ব্যাপারটিকে মেন্ডেলের দ্বিতীয় সূত্র বা স্বাধীনভাবে সঞ্চারণ সূত্র বলে, যার মানে হল পিতা-মাতার বিভিন্ন বংশাণুর অ্যালিল দৈবচয়ন ভিত্তিতে মিশ্রিত হয়ে নানান রকম বিন্যাস সংবলিত সন্তানাদির জন্ম দেয়। (কিছু বংশাণু সম্পূর্ণ স্বাধীনভাবে সঞ্চারিত হয় না, বরং বংশাণুগত লিংকেজ প্রদর্শন করে যা এই নিবন্ধে পরবর্তীতে আলোচনা করা হয়েছে।) প্রায়ই একটি নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য একাধিক বংশাণু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। যেমন ব্লু-আইড মেরিতে এমন একটা বংশাণু আছে যার অ্যালিল ফুলের রঙ নীল বা বেগুনি নির্ধারণ করে। আবার এতে আরেকটি বংশাণু আছে যা কিনা একই কাজ করে: সেটি ফুলের রঙ্গিন বা বর্ণহীন হওয়া নির্ধারণ করে। যখন একটি উদ্ভিদের এই বর্ণহীন বংশাণুর দুটি অ্যালিল থাকলে ফুলটি সাদাই হয়, অপর বংশাণুতে যাই থাকুক না কেন। একটি বংশাণুর অপর বংশাণুর বৈশিষ্ট্য বাধা দানের এই ব্যাপারটি এপিস্ট্যাসিস নামে পরিচিত, যেখানে দ্বিতীয় বংশাণুটি প্রথম বংশাণুর প্রতি এপিস্ট্যাটিক। Griffiths et al. (2000), Chapter 4 (Gene Interaction): Gene interaction and modified dihybrid ratios অনেক বৈশিষ্ট্যই (যেমন সাদা আর বেগুনি ফুল) কোন একটা একক বংশাণুর নিয়ন্ত্রণাধীন বিচ্ছিন্ন গুণ নয়, বরং এগুলো অবিচ্ছিন্ন বৈশিষ্ট্য (যেমন মানুষের গায়ের রঙ, উচ্চতা ইত্যাদি) এই জটিল বৈশিষ্ট্যগুলো অনেক কয়টি বংশাণুর মিলিত বহিঃপ্রকাশ। এই বংশাণুগুলোর প্রভাব অনেক উপাদান দ্বারাই প্রভাবিত হয়, বিশেষতঃ পরিবেশের নানান উপাদান দ্বারা। কোন একটি জটিল বৈশিষ্ট্যে কোন বংশাণুর অবদানের পরিমাণকে ঐ বংশাণুর হেরিটিবিলিটি বলে। Griffiths et al. (2000), Chapter 25 (Quantitative Genetics): Quantifying heritability কোন একটি বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকার আপেক্ষিক - দ্রুত পরিবর্তনশীল পরিবেশে পরিবেশ কোন আচরণের পরিবর্তনে উল্লেখযগ্য ভূমিকা রাখে। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় মানুষের উচ্চতা একটি জটিল বৈশিষ্ট্য, আমেরিকাতে যার উত্তরাধিকার ৮৯%। তবে নাইজেরিয়া, যেখানে অপুষ্টির হার অনেক বেশি, সে দেশে এই পরিমাণটি গিয়ে দাঁড়ায় ৬২% এ। Abstract from NCBI বংশগতির আণবিক ভিত্তি ডিএনএ ও ক্রোমোসোম thumb|200px|right|ডিএনএ'র আণবিক গঠন, সুতোদুটোর মাঝে হাইড্রোজেন বন্ধনের মাধ্যমে ক্ষারের জোড় গঠন। বংশাণুর আণবিক ভিত্তি হল ডিঅক্সিরাইবোনিউক্লিয়িক এসিড (ডিএনএ)। ডিএনএ নিউক্লিওটিডের শৃংখলে তৈরি, যা আবার চার ধরনের: এডেনিন(A), সাইটোসিন(C), গুয়ানিন(G) ও থাইমিন(T)। ডিএনএতে বংশাণুগত তথ্য এই নিউক্লিওটিডগুলোর বিন্যাসের ওপর নির্ভরশীল আর বংশাণু ডিএনএ শৃংখলে ক্রমান্বয়ে সজ্জিত থাকে। একমাত্র "ভাইরাসই এই নিয়মের ব্যতিক্রম - এর বংশাণুগত তথ্য আরএনএতেও তৈরি হতে পারে। ডিএনএ সাধারণভাবে একটি দ্বি-সূত্রক তন্তু, যা কিনা পাকানো দ্বি-সর্পিল অবস্থায় থাকে। ডিএনএ'র প্রতিটি নিউক্লিওটাইড অপর তন্তুতে অবস্থিত তার সহযোগী নিউক্লিওটাইডের সাথে বন্ধনযুক্ত হয়: A জোট বাঁধে T এর সাথে, আর G, C এর সাথে। এভাবে তৈরি দ্বি-সর্পিল আকারে প্রতিটি সূত্রকেই তার পরিপূরক সূত্রকের প্রয়োজনাতিরিক্ত হয়ে সকল প্রয়োজনীয় তথ্য সংরক্ষণ করে। ডিএনএ'র গঠনই বংশগতির ভৌত ভিত্তি: ডিএনএ দ্বিত্বকরণের মাধ্যমে বংশাণুগত তথ্য প্রতিলিপি করা হয়, যখন সূত্রকদুটি বিচ্ছিন্ন হয়ে গিয়ে প্রতিটি সুতোই নিজের পরিপূরক সুতো তৈরির ছাঁচের মতো কাজ করে। Griffiths et al. (2000), Chapter 8 (The Structure and Replication of DNA): Mechanism of DNA Replication ডিএনএ সূত্রকে বংশাণু মাত্রিকভাবে সজ্জিত থাকে, যাকে ক্রোমোসোম বলে। ব্যাকটেরিয়াতে প্রতিটি কোষেই একক বৃত্তাকার ক্রোমোসোম থাকে, যেখানে সুকেন্দ্রিক জীবে (যার মধ্যে উদ্ভিদ ও প্রাণী অন্তর্ভুক্ত) বহু সংখ্যক মাত্রিক ক্রোমোসোমে ডিএনএ সজ্জিত থাকে। এই ডিএনএ সূত্রকগুলো অনেক লম্বা হয়; উদাহরণস্বরূপ বলা যায় মানুষের দীর্ঘতম ক্রোমোসোম প্রায় ২৪৭ মিলিয়ন ক্ষার-জোড়া (base pair) নিয়ে গঠিত। free full text available কোন ক্রোমোসোমে অবস্থিত ডিএনএ তার গাঠনিক প্রোটিনের সাথে সম্পর্কযুক্ত, যা তাকে সংগঠিত ও বিন্যস্ত রাখে এবং ডিএনএ'র সাথে যোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ করে, যা কিনা ক্রোমাটিন নামক একটি পদার্থের মাধ্যমে সম্পাদিত হয়; সুকেন্দ্রিক জীবে ক্রোমাটিন সাধারণতঃ নিউক্লিওসোমে তৈরি হয়, যা হল হিস্টোন প্রোটিনের কোরের (core) চারপাশে ডিএনএ পেঁচিয়ে তৈরি হয়। Alberts et al. (2002), II.4. DNA and chromosomes: Chromosomal DNA and Its Packaging in the Chromatin Fiber কোন জীবের বংশগতিগত পদার্থের সম্পূর্ণ সেটকে (সাধারণতঃ সব ক্রোমোসোমের সম্মিলিত ডিএনএ অনুক্রম) বংশাণুসমগ্র বলা হয়। যেখানে হ্যাপ্লয়েড জীবের একটি ক্রোমোসোমের কেবল একবারই থাকে সেখানে অনেক ডিপ্লয়েড জীবের (উদ্ভিদ ও প্রাণী) প্রতিটি ক্রোমোসোম দুবার করে আছে, ফলে তাদের প্রতিটি বংশাণুরও দুটি প্রতিলিপি আছে। Griffiths et al. (2000), Chapter 3 (Chromosomal Basis of Heredity): Mendelian genetics in eukaryotic life cycles কোন বংশাণুর অ্যালিলদ্বয় অপত্য ক্রোমাটিডের সদৃশ লোকাইতে অবস্থান করে, আর প্রতিটি অ্যালিল প্রত্যেক পূর্বপুরুষের (পিতা বা মাতা) কাছ থেকে আসে। thumb|left|ওয়ালথার ফ্লেমিং এর ১৮৮২ সালের সুকেন্দ্রিক কোষ বিভাজনের চিত্র। ক্রোমোসোম প্রতিলিপি, ঘনীভূত ও সংবদ্ধ হয়, তারপর কোষ বিভাজনের সাথে সাথে ক্রোমোসোমও দুটি ভিন্ন অপত্য কোষে ভাগ হয়ে যায়। সেক্স ক্রোমোসোম একটি ব্যতিক্রমধর্মী ক্রোমোসোম, অনেক প্রাণীর লিঙ্গ নির্ধারণে বিশেষ কিছু ক্রোমসোমের ভূমিকা আছে। Griffiths et al. (2000), Chapter 2 (Patterns of Inheritance): Sex chromosomes and sex-linked inheritance মানুষ এবং অন্যান্য প্রাণীতে Y ক্রোমোসোমে অল্প কিছু বংশাণু থাকে এবং এটি পুরুষ লিঙ্গিক বৈশিষ্ট্যের বিকাশ ঘটায়, যেখানে X ক্রোমোসোম অন্যান্য ক্রোমোসোমের মতই অনেক বংশাণু বহন করে, যার অনেকগুলোর সাথে লিঙ্গ নির্ধারণের কোন সম্পর্ক নেই। মেয়েদের X ক্রোমোসোমের দুটি প্রতিলিপি থাকে, যেখানে ছেলেদের একটি X ও একটি Y ক্রোমোসোম থাকে - X ক্রোমোসোমের প্রতিলিপি সংখ্যার এই পার্থক্যই সেক্স -লিঙ্কড ডিজঅর্ডারের মত অস্বাভাবিক বংশগতির নমুনা সূত্রপাত করে। প্রজনন কোষ বিভাজিত হবার সময় তাদের বংশাণুসমগ্র প্রতিলিপি করা হয় এবং প্রতিটি অপত্য কোষ একটি প্রতিলিপির অধিকারী হয়। এই প্রক্রিয়াটি মাইটোসিস নামে পরিচিত এবং প্রজননের এই সরলতম প্রক্রিয়াটিই অযৌন প্রজননের ভিত্তি। বহুকোষী জীবেও অযৌন প্রজনন ঘটতে পারে, যা কেবলমাত্র পিতা বা মাতার একজনের বংশাণুসমগ্র বিশিষ্ট সন্তানের জন্ম দেয়। পূর্বপুরুষের হুবহু বৈশিষ্ট্য সংবলিত সন্তান ক্লোন হিসেবে পরিচিত। সুকেন্দ্রীক জীবে যৌন প্রজনন হয়, যে প্রক্রিয়ায় সন্তান পিতা-মাতার বংশাণুগত বস্তুর মিশ্রণের উত্তরাধিকারী হয়। যৌন প্রজননের প্রক্রিয়াটি বংশাণুসমগ্রের একটি প্রতিলিপি বিশিষ্ট হ্যাপ্লয়েড ও দুটি প্রতিলিপি বিশিষ্ট ডিপ্লয়েড অবস্থার পরিবর্তনের মাধ্যমে ঘটে। হ্যাপ্লয়েড কোষ গুলো একত্রিত হয় এবং এদের বংশাণুগত বস্তুর মিলনে ডিপ্লয়েড কোষ সৃষ্টি হয়। ডিপ্লয়েড কোষ ডিএনএ দ্বিত্বঃকরণ ছাড়াই ভাগ হয়ে গিয়ে হ্যাপ্লয়েড কোষ তৈরি করে এবং এই প্রক্রিয়ায় অপত্য কোষ দৈব চয়ন ভিত্তিতে প্রতি জোড়া ক্রোমোসোমের যে কোন একটির উত্তরাধিকারী হয়। বেশির ভাগ উদ্ভিদ ও প্রাণীই ডিপ্লয়েড, যেখানে তাদের একক কোষে তৈরি গ্যামিট হ্যাপ্লয়েড। হ্যাপ্লয়েড বা ডিপ্লয়েড পদ্ধতির যৌন প্রজনন না হলেও ব্যাকটেরিয়ার নতুন বংশাণুগত বৈশিষ্টের অধিকারী হয়বার অনেক পন্থা আছে। কিছু ব্যাকটেরিয়া কনজুগেশন এর মাধ্যমে অপর ব্যাকটেরিয়াতে ক্ষুদ্র বৃত্তাকার ডিএনএ খন্ড পাঠাতে পারে। Griffiths et al. (2000), Chapter 7 (Gene Transfer in Bacteria and Their Viruses): Bacterial conjugation ব্যাকটেরিয়া পরিবেশ থেকেও ডিএনএ তৈরির কাঁচামাল সংগ্রহ করে তা বংশাণুসমগ্রে রূপান্তরিত করতে সক্ষম, যা কিনা রূপান্তর নামে পরিচিত। Griffiths et al. (2000), Chapter 7 (Gene Transfer in Bacteria and Their Viruses): Bacterial transformation এই প্রক্রিয়াগুলো সমান্তরাল বংশাণু স্থানান্তর ঘটায়, যার মাধ্যমে এমনিতে সম্পর্কহীন জীবে বংশাণুগত তথ্যের আদান-প্রদান হয়। রিকমবিনেশন ও বংশাণুগত সংযুক্তি thumb|175px|right|থমাস মর্গান হান্টের ১৯১৬ সালে তৈরিকৃত ছবিতে ক্রোমোসোমের যুগল ক্রসওভার ক্রোমোসোমের ডিপ্লয়েড চরিত্র বিভিন্ন ক্রোমোসোমকে যৌন প্রজননের সময় স্বাধীনভাবে সঞ্চারিত হতে দেয়, যা বংশাণুর নতুন নতুন সমাবেশ সৃষ্টি করে। তত্ত্বীয়ভাবে একই ক্রোমোসোমে অবস্থিত বংশাণুর রিকবিনেশন হবার কথা নয়, তবে ক্রোমোসোমাল ক্রসওভার এর কারণে তা ঘটে থাকে। ক্রসওভারের সময় ক্রোমোসোম ডিএনএ'র খন্ড স্থানান্তর করে, এভাবেই ক্রোমোসোমের মধ্যে বংশাণুর অ্যালিল আদান-প্রদান হয়। Griffiths et al. (2000), Chapter 5 (Basic Eukaryotic Chromosome Mapping): Nature of crossing-over ক্রোমোসোমাল ক্রসওভারের ব্যাপারটি ঘটে সাধারণতঃ মিয়োসিস বিভাজনের সময়, যা হ্যাপ্লয়েড কোষ তৈরি করে। ক্রোমোসোমের দুটি নির্দিষ্ট বিন্দুর মধ্যে ক্রোমোসোমাল ক্রসওভার ঘটার সম্ভাবনা তাদের মধ্যে (বিন্দু দুটির) দূরত্বের ওপর নির্ভর করে। কোন একটি বড় দূরত্বের জন্যে ক্রসওভারের সম্ভাবনা এত বেশি থাকে যে বংশাণুর উত্তরাধিকার কার্যকরবভাবে সম্পর্কহীন থাকে। যেসন বংশাণু কাছাকাছি থাকে, যদিও ক্রসওভারের স্বল্প সম্ভাবনা এটা নির্দেশ করে যে বংশাণুগুলো বংশাণুগত লিংকেজ প্রদর্শন করে - দুটি বংশাণুর অ্যালিল একসাথে উত্তরসূরিতে যেতে চায়। এক গুচ্ছ বংশাণুর জন্যে লিংকেজের পরিমাণ একত্রিত হয়ে রৈখিক লিংকেজ ম্যাপ সৃষ্টি করে যা কোন ক্রোমোসোমে বংশাণুর বিন্যাসের একটি প্রাথমিক ধারণা প্রদান করে। Griffiths et al. (2000), Chapter 5 (Basic Eukaryotic Chromosome Mapping): Linkage maps বংশাণুর অভিব্যক্তি বংশগতীয় সঙ্কেত thumb|right|200px|বংশগতীয় সঙ্কেত:বার্তাবাহক আরএনএ'র অন্তর্বর্তী অবস্থায় ডিএনএ, প্রোটিনের জন্যে ট্রিপলেট সঙ্কেতসহ। বংশাণু সাধারণতঃ প্রোটিন তৈরির মাধ্যমে তাদের প্রকাশ ঘটায়, যেটি কিনা কোষের সবচেয়ে জটিল কাজগূলো সম্পাদনকারী অণু। প্রোটিন হল অ্যামিনো অ্যাসিডের শৃঙ্খল, আর বংশাণুর ডিএনএ ক্রম (আরএনএ অন্তবর্তীর মাধ্যমে) সুনির্দিষ্ট প্রোটিন ক্রম তৈরির জন্যে ব্যবহৃত হয়। এই প্রক্রিয়াটি বংশাণুর ডিএনএ ক্রমের সাথে মিল থাকা আরএনএ অণু তৈরির মাধ্যমে আরম্ভ হয়, যে প্রক্রিয়াটি প্রতিলিপিকরণ (transcription) নামে পরিচিত। এই বার্তাবাহক আরএনএ অণুটি অতঃপর সংশ্লিষ্ট ক্রমিক অ্যামিনো অ্যাসিড উৎপাদনে ব্যবহৃত হয়, যে প্রক্রিয়াটি ট্রান্সলেশন নামে পরিচিত। প্রতিটি গ্রুপে তিনটি নিউক্লিওটাইডের ক্রম থাকে, যাকে কোডন বলা হয়, যা কিনা প্রোটিনের সম্ভাব্য বিশটি অ্যামিনো অ্যাসিডের একটির সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয় - এই যোগাযোগ বংশগতীয় সঙ্কেত নামে পরিচিত। I. 5. DNA, RNA, and the Flow of Genetic Information: Amino Acids Are Encoded by Groups of Three Bases Starting from a Fixed Point তথ্যের প্রবাহ হয় দিক-অনির্দিষ্ট, তথ্য নিউক্লিওটাইডের অনুক্রম থেকে অ্যামিনো অ্যাসিডের অনুক্রম প্রোটিনে স্থানান্তরিত হয়, কিন্তু এটি কখনো প্রোটিন থেকে ডিএনএ অনুক্রমের দিকে ফেরত যায় না, ফ্রান্সিস ক্রিক যাকে বলেছিলেন আণবিক জীববিদ্যার কেন্দ্রীয় মতবাদ। Crick, F (1970): Central Dogma of Molecular Biology (PDF). Nature 227, 561–563. PMID 4913914 অ্যামিনো এসিডের সুনির্দিষ্ট অনুক্রমের কারণেই প্রোটিনের স্বতন্ত্র ত্রি-মাত্রিক কাঠামো তৈরি হয়,আর এই ত্রি-মাত্রিক কাঠামোর সাথে এর কাজের সম্পর্ক রয়েছে। Alberts et al. (2002), I.3. Proteins: The Shape and Structure of ProteinsAlberts et al. (2002), I.3. Proteins: Protein Function কিছু হল সরল গাঠনিক অণু, যেমন প্রোটিন কোলাজেন দ্বারা গঠিত তন্তু। প্রোটিন অন্য প্রোটিন এবং সরল অণুর সাথে যুক্ত হতে পারে এবং কখনো কখনো তা এনজাইমের মত কাজ করে রাসায়নিক বিক্রিয়াকে প্রভাবিত করে (নিজের প্রোটিন গঠন পরিবর্তন না করে)। প্রোটিনের গঠন পরিবর্তনশীল; প্রোটিনের হিমোগ্লোবিন বিভিন্ন রূপে পরিবর্তিত হয় এবং স্তন্যপায়ীর রক্তে অক্সিজেন সংগ্রহ, পরিবহন, এবং পরিত্যাগের কাজগুলো করে। ডিএনএতে একটিমাত্র নিউক্লিওটিডের অ্যামিনো এসিডের ক্রমেও একটি পরিবর্তন ঘটায়। যেহেতু প্রোটিন অ্যামিনো এসিডের শিকল দ্বারা তৈরি তাই এর কোন পরিবর্তন প্রোটিনে নাটকীয় পরিবর্তন আন্তে পারে; প্রোটিন পৃষ্ঠের এমন কোন পরিবর্তন ঘটতে পারে যে তা অন্য প্রোটিন ও অণুর সাথে বন্ধন তৈরির ক্ষমতা হারিয়ে ফেলতে পারে। যেমন, সিকল-সেল এনিমিয়া হল একটি বংশাণুগত অসুখ যা হিমোগ্লোবিনের β-গ্লোবিন সঙ্কেতায়ন অঞ্চলে একটি বেস পরিবর্তনের কারণে ঘটে, যার ফলে একটি অ্যামিনো এসিডের পরিবর্তন ঘটে যা হিমোগ্লোবিনের বাহ্যিক বৈশিষ্ট্য পরিবর্তন করে। সিকল সেল আক্রান্ত হিমোগ্লোবিন নিজেদের সাথে লেগে থাকে, যা তন্তুময় গঠন সৃষ্টি করে যার ফলে লোহিত রক্ত কণিকাবাহী প্রোটিনের আকার বিকৃত হয়ে যায়। তখন এই কাস্তে আকৃতির হিমোগ্লোবিন আর আগের মত রক্ত নালীর মধ্য দিয়ে স্বচ্ছন্দ্যে চলতে পারে না, এরা জমাট বাঁধে বা বিকৃত হয়ে যাবার প্রবণতা দেখায়, যার ফলে এই অসুখের সাথে জড়িত সমস্যাগুলো দেখা দেয়। কিছু বংশাণু আরএনএতে থাকে কিন্তু তারা প্রোটিন উৎপাদে রূপান্তরিত হয় না - এদের বলা হয় অ-সঙ্কেতায়ক আরএনএ অণু। কিছু ক্ষেত্রে এরা একত্র হয়ে এমন গঠন তৈরি করে যা কোষের জটিল ক্রিয়াগুলো (যেমন: রাইবোজোমীয় আরএনএ এবং হস্তান্তর আরএনএ) সম্পাদন করে। আরএনএ অন্য আরএনএ'র সাথে সংকরণ মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রক প্রভাব সৃষ্টি করে (যেমন: অণু-আরএনএ)। প্রকৃতির স্ববিরোধ thumb|150px|upright|সিয়ামিজ বিড়ালের পিগমেন্ট তৈরিতে তাপমাত্রা সংবেদী মিউটেশন হয়। যদিও বংশাণু কোন জীবের সব প্রয়োজনীয় তথ্য জমা করে রাখে, চূড়ান্ত ফিনোটাইপ নির্ধারণে পরিবেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে - এই দ্বৈততাকে অনেক সময় "প্রকৃতির স্ববিরোধ" বলা হয়। কোন জীবের ফিনোটাইপ বংশাণুবিজ্ঞানের সাথে পরিপ্বার্শের মিথস্ক্রিয়ার ওপর নির্ভর করে। এর একটি উদাহরণ হল তাপমাত্রা-সংবেদী মিউটেশান। প্রায়ই একটি অ্যামিনো এসিডের পরিবর্তন প্রোটিনের গঠন ও অন্যান্য অণুর সাথে তার পারস্পরিক ক্রিয়ার পরিবর্তন করে না, তবে এটি ঠিকই তার গঠন অস্থিতিশীল করে তোলে। উচ্চ তাপমাত্রার পরিবেশে, যখন অণুগুলো খুব দ্রুত ছুটোছুটি করে আর পরষ্পরের সাথে সংঘর্ষ ঘটায়, তখন প্রোটিন তার গঠন হারিয়ে ফেলে এবং এর কার্যকারিতা নষ্ট হয়ে যায়। তবে নিম্ন তাপমাত্রায় তা স্বাভাবিকভাবেই নিজের কাজ সম্পন করে।সিয়ামিজ বিড়ালের পশমের রং নির্ধারণী বংশাণুতে এ ধরনের মিউটেশান লক্ষ্য করা যায়, যখন পিগমেন্ট তৈরিকারী একটি এনজাইমে মিউটেশানের ফলে তা অস্থিতিশীল হয়ে যায় এবং উচ্চ তাপমাত্রায় কর্মক্ষমতা হারিয়ে ফেলে। প্রোটিনটি ত্বকের অপেক্ষাকৃত শীতল অংশগুলোতে (পা, কান, লেজ এবং মুখমন্ডলে) ভালোভাবেই কাজ করে - ফলে উচ্চ তাপমাত্রাবিশিষ্ট অংশগুলোতে এর লোম হয় গাঢ় বর্ণের। পরিবেশ মানুষের বংশগতিমূলক রোগ ফিনাইলকিটোনিউরিয়ালের প্রভাবেও নাটকীয় ভূমিকা পালন করে। যে মিউটেশানের কারণে ফিনাইলকিটোনিউরিয়াল শরীরের ফিনাইলঅ্যালানিন নামক অ্যামিনো এসিডটি ভাঙ্গার ক্ষমতা বাধাগ্রস্ত করে, যার ফলে একটি ক্ষতিকর অন্তবর্তী অণু তৈরি হয়, তা পালাক্রমে অগ্রসর মানসিক শ্লথতা ও প্যারালাইসিসের উপসর্গ সৃষ্টির কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ফিনাইলকিটোনিউরিয়াল মিউটেশান আছে এমন রোগী যদি কঠোরভাবে অ্যামিনো এসিড যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলেন, তবে তিনি সুস্থ-স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারেন। বংশাণু নিয়ন্ত্রণ কোন নির্দিষ্ট জীবের বংশাণুসমগ্র হাজার হাজার বংশাণু ধারণ করে, তবে কোন নির্দিষ্ট সময়ে তাদের সবাইকেই যে সক্রিয় থাকতে হবে এমন কোন কথা নেই। বংশাণু তখনই প্রকাশিত হয় যখন তা mRNA তে রূপান্তরিত হয় (এবং এর মাধ্যমে প্রোটিনে রূপান্তরিত হয়), বংশাণুর অভিব্যক্তি নিয়ন্ত্রণের জন্য অনেকগুলো কোষগত পদ্ধতি আছে যার মাধ্যমে কেবল প্রয়োজনের সময়ই বংশাণুকে প্রকাশিত হতে দেওয়া হয়। ট্রান্সক্রিপশন ফ্যাক্টর হল নিয়ন্ত্রক প্রোটিন, যা বংশাণুর শুরুতে অবস্থান করে এর প্রকাশ নিয়ন্ত্রণ করে। উদাহরণস্বরূপ, ইশেরিকিয়া কোলাই ব্যকটেরিয়াতে ট্রিপটোফেন নামক অ্যামিনো অ্যাসিড সংশ্লেষের জন্যে প্রয়োজনীয় বংশাণুর সমাবেশ বিদ্যমান। কিন্তু কোষে যখন ট্রিপটোফেনের অভাব নেই তখন আর ওই বংশাণুটির কার্যকারিতা কাঙ্ক্ষিত নয়। ট্রিপটোফেনের উপস্থিতি বংশাণুর কার্যক্রমকে সরাসরি ব্যাহত করে— ট্রিপটোফেন অণু ট্রিপটোফেন রিপ্রেসরের সাথে যুক্ত হয়, যা রিপ্রেসরের গঠন এমনভাবে পরিবর্তন করে যে তা বংশাণুর সাথে সংযুক্ত হয়ে যায়। ট্রিপটোফেন রিপ্রেসর অনুলিপিকরণ বাধাগ্রস্ত করে দিয়ে বংশাণুর প্রকাশিত হবার পথ রুদ্ধ করে দেয়, যা ঋণাত্বক ফিডব্যাক সৃষ্টি করে বংশাণুর ট্রিপটোফেন সংশ্লেষণ প্রক্রিয়া বন্ধ করে দেয়। thumb|upright|right|200px|Transcription factors bind to DNA, influencing the transcription of associated genes. বংশাণু অভিব্যক্তির ভিন্নতা বহুকোষী জীবে স্পষ্ট, যেখানে কোষগুলো একই বংশাণুসমগ্র ধারণ করে কিন্তু ভিন্ন ভিন্ন কাঠামো ও আচরণের অধিকারী হয় যার কারণ হল তাদের মধ্যে প্রকাশিত বংশাণুর ভিন্নতা। একটি বহুকোষী জীবে সব কোষই একটি কোষ থেকে উৎপত্তি লাভ করে, কিন্তু এরা নানারকম কোষে ভাগ হয়ে যায় বহিঃস্থ ও আন্তঃকোষীয় সংকেতের কারণে এবং এভাবে ধীরে ধীরে এরা ভিন্ন ভিন্ন বংশাণু অভিব্যক্তির প্যাটার্ন তৈরি করে ভিন্ন ভিন্ন আচরণ করে থাকে। যেহেতু কোন একক বংশাণু বহুকোষী বংশাণুর উন্নয়নের জন্যে দায়ী নয়, তাই এই প্যাটার্নগুলো বহুসংখ্যক কোষের মধ্যে জটিল মিথস্ক্রিয়ার মাধ্যমে তৈরি হয়। ইউক্যারিয়টদের মধ্যে ক্রোমাটিনের কিছু বিশেষ গাঠনিক বৈশিষ্ট্য থাকে যা বংশাণুর প্রতিলিপিকরণকে প্রভাবিত করে, যা প্রায়শই ডিএনএ ও ক্রোমাটিনের পরিবর্তনের মাধ্যমে সম্পন্ন হয় যা কিনা তাদের অপত্য কোষগুলো দ্বারা দৃঢ়ভাবে অর্জিত হয়। এই বৈশিষ্ট্যগুলোকে এপিজেনেটিক বলা হয় কারণ এরা ডিএনএ সিকুয়েন্সের ওপরে অবস্থান করে এবং এক প্রজন্ম থেকে আরেক প্রজন্মে বংশগতিসূত্রে স্থানান্তরিত হয়। এপিজেনেটিক বৈশিষ্ট্যের কারণে একই মাধ্যম থেকে উৎপাদিত বিভিন্ন প্রকারের কোষ ভিন্ন ভিন্ন বৈশিষ্ট্যের উত্তরাধিকারী হয়। যদিও এপিজেনেটিক বৈশিষ্ট্য সাধারণত গাঠনিক ধারায় গতিশীল একটি প্রক্রিয়া, এর মধ্যে কিছু, যেমন প্যারামিউটেশান এর ব্যাপারটির বহুপ্রজন্ম উত্তরাধিকারের অধিকারী এবং বংশগতির বাহক হিসেবে ডিএনএর ভিত্তির একটি দুর্লভ ব্যতিক্রম হিসেবে অবস্থান করছে। বংশাণুর পরিবর্তন রূপান্তর (মিউটেশন) thumb|upright|175px|Gene duplication allows diversification by providing redundancy: one gene can mutate and lose its original function without harming the organism. ডিএনএ প্রতিলিপিকরণের সময় কালেভদ্রে দ্বিতীয় সূত্রকের শৃংখলকরণে ত্রুটি ঘটতে পারে। এই ভুলগুলো, যেগুলো কিনা রূপান্তর বা পরিব্যক্তি (মিউটেশন) নামে পরিচিত, কোন জীবের ফিনোটাইপের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে, বিশেষ করে তা যদি বংশাণুর প্রোটিন সংকেতের ক্রমে ঘটে থাকে। এই ভুলের মাত্রা খুবই ছোট হয়ে থাকে— প্রতি ১০-১০০ মিলিয়ন বেসের মধ্যে ১ টি— ডিএনএ পলিমারেজের মুদ্রণ সংশোধন (প্রুফ-রিডিং) ক্ষমতার কারণে এটি সম্ভব হয়।Griffiths et al. (2000), Chapter 16 (Mechanisms of Gene Mutation): Spontaneous mutations(মুদ্রণ সংশোধন ক্ষমতা ব্যতীত ভুলের মাত্রা হাজার গুণ বেড়ে যায়; কারণ অনেক ভাইরাস ডিএনএ ও আরএনএ পলিমারেজের সীমাবদ্ধ প্রুফ-রিডিং ক্ষমতার ওপর নির্ভর করে; যার ফলে তারা দ্রুত রূপান্তরিত হতে পারে।) যেসব প্রক্রিয়ার মাধ্যমে ডিএনএতে পরিবর্তনের হার বৃদ্ধি পায় সেগুলোকে মিউটাজেনিক বলা হয়; মিউটাজেনিক রাসায়নিক যৌগ ডিএনএ রেপ্লিকেশনে ভুলের মাত্রা বাড়িয়ে দেয়, প্রায়শই বেস-পেয়ারের কাঠামোতে অনুপ্রবেশের মাধ্যমে, যখন অতিবেগুনি তেজস্ক্রিয়তা মিউটেশনের হার বাড়ায় ডিএনএ কাঠামোর ক্ষতি করে।Griffiths et al. (2000), Chapter 16 (Mechanisms of Gene Mutation): Induced mutations ডিএনএতে স্বাভাবিকভাবে রাসায়নিক ত্রুটিও ঘটে থাকে, এবং যদিও কোষের ডিএনএ মেরামত কৌশল ভুল সংযোগ ও ভাঙ্গা অংশ জোড়া দেবার কাজ করে থাকে, কোন কোন সময় এই প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং ডিএনএ তার পূর্বের গঠনে ফিরে যেতে পারে না। যেসব জীব ক্রোমোসমাল ক্রসওভারের মাধ্যমে ডিএনএ আদান-প্রদান ও বংশাণু পুনঃসংযোগ করে থাকে, মিয়োসিসের সময় সারিবদ্ধকরণের ত্রুটির ফলে তাদের রূপান্তর ঘটতে পারে।Griffiths et al. (2000), Chapter 17 (Chromosome Mutation I: Changes in Chromosome Structure): Introduction ক্রসওভারের সময় ভুলের সম্ভাবনা বেশি হয় যখন অনুরোপ ক্রমের কারণে অংশীদার ক্রোমসোম ভুলভাবে বিন্যস্ত হয়; এর ফলে বংশাণুসমগ্রের কিছু এলাকায় মিউটেশন হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়। এই ত্রুটি থেকে ডিএনএ সিকুয়েন্সে বড় ধরনের কাঠামোগত পরিবর্তন ঘটতে পারে— সম্পূর্ণ এলাকার প্রতিলিপিকরণ, ইনভার্সন অথবা বিনষ্টকরণ, অথবা বিভিন্ন ক্রোমোসোমের মধ্যে দুর্ঘটনাবশত পুরো অংশ বিনিময় (যাকে বলা হয় ক্রোমোসোমাল ট্রান্সলোকেশন)। বিবর্তন ও প্রাকৃতিক নির্বাচন রূপান্তরের মাধ্যমে ভিন্ন বংশাণুোটাইপ বিশিষ্ট জীব তৈরি হয়, এবং এই পরিবর্তনের ফলে ফিনোটাইপও পরিবর্তিত হয়। বহু সংখ্যক রূপান্তরও একটি জীবের ফিনোটাইপ, স্বাস্থ্য এবং প্রজনন উপযোগীতার ওপর অল্পই প্রভাব ফেলতে পারে। যেসব রূপান্তর প্রকৃতপক্ষে প্রভাব ফেলতে পারে তার সাধারণত ক্ষতিকর হয়ে থাকে, তবে কখনো কখনো রূপান্তর উপকারীও হতে পারে। ড্রোসোফিলা মেলানোজাস্টার মাছিতে করা গবেষণা থেকে জানা যায় যদি রূপান্তরের মাধ্যমে বংশাণুর তৈরিকৃত প্রোটিন পরিবর্তিত হয়ে যায়, তবে খুব সম্ভবতঃ তা ক্ষতিকর হবে, কারণ শতকরা ৭০ ভাগ রূপান্তরই ক্ষতকর হয়, এবং অবশিষ্টাংশ হয় নিরপেক্ষ নয়তো স্বল্পভাবে উপকারী হয়। thumb|left|200px|An evolutionary tree of eukaryotic organisms, constructed by comparison of several orthologous gene sequences জনসংখ্যা বংশাণুবিজ্ঞান গবেষণা কোন জনগোষ্ঠীর মধ্যে বংশাণুগত পরিবর্তন এবং কীভাবে সময়ের সাথে এর বণ্টন পরিবর্তিত হয় তা অনুসন্ধান করে।Griffiths et al. (2000), Chapter 24 (Population Genetics): Variation and its modulation কোন জনসমষ্টিতে অ্যালিল কম্পাংক প্রাকৃতিক নির্বাচন দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে, যেখানে একটি অ্যালিলের টিকে থাকার উচ্চ ক্ষমতা এবং প্রজনন ঐ জনসমষ্টিতে এর উপস্থিতির হার বাড়িয়ে দেয়। বহু প্রজন্মান্তরে জীবের বংশাণুসমগ্র পরিবর্তিত হয়ে বিবর্তন ঘটাতে পারে। রূপান্তর ও লাভজনক রূপান্তরের নির্বাচন একটি প্রজাতিকে বিবর্তিত করে পরিবেশে আরো ভালোভাবে টিকে থাকার উপযোগী করে তুলতে পারে, যা অভিযোজন নামে পরিচিত।. Related earlier ideas were acknowledged in প্রজাত্যায়ন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে নউন প্রজাতির সৃষ্টি হয়, এই প্রক্রিয়াটি প্রায়শই ভৌগোলিক বিচ্ছিন্নতার সাথে জড়িত যা বিভিন্ন জনগোষ্ঠীকে বংশাণুগত পরিবর্তনের সুযোগ দেয়। পপুলেশন বায়োলজি ও বিবর্তনে বংশাণুগত নীতিগুলোর প্রয়োগকে আধুনিক সংশ্লেষ বলা হয়। যেহেতু সিকুয়েন্স অপসারী হয় এবং বিবর্তনের মাধ্যমে পরিবর্তিত হয় , সিকুয়েন্সের এই পরিবর্তন আণবিক ঘড়ি হিসেবে ব্যবহার করে তাদের মধ্যে বিবর্তনগত দূরত্ব পরিমাপ করা যায়। বংশাণুগত তুলনাই ভিন্ন ভিন্ন প্রজাতির মধ্যে সম্পর্কতা চরিত্রায়িত করার সর্বোৎকৃষ্ট উপায়। এটি প্রায়শই ত্রুটিপূর্ণ ফিনোটাইপিক তুলনার একটি উৎকৃষ্ট প্রতিস্থাপন। প্রজাতির মধ্যে বিবর্তনগত দূরত্বের ভিত্তিতে বিবর্তন বৃক্ষ তৈরি করা হয় - এই বৃক্ষ সাধারণ বংশক্রমাগমের প্রতিনিধিত্ব করে এবং সময়ের সাথে প্রজাতির অপসারিতার পরিমাপ করে, যদিও এরা সম্বন্ধহীন প্রজাতির মধ্যে বংশাণুগত বস্তুর আদান-প্রদান দেখাতে পারে না (যা সমান্তরাল বংশাণু বদল নামে পরিচিত এবং ব্যাকটেরিয়াতে অহরহ ঘটে থাকে)। গবেষণা ও প্রযুক্তি পরীক্ষামূলকভাবে প্রস্তুতকৃত জীব জেনেটিক্স thumb|right|সাধারণ ফলের মাছি (Drosophila melanogaster) বংশাণুগত গবেষণায় একটি জনপ্রিয় মডেল অর্গানিজম। যদিও বংশাণুতাত্ত্বিকরা সুপ্রচুরসংখ্যক জীবের বংশগতি নিয়ে চিন্তাভাবনা করেন, গবেষকরা নির্দিষ্ট ধরনের কিছু জীবের বংশাণুবিজ্ঞানের ওপর বিশেষভাবে নজর দেন। এর কারণ হল কোন একটি জীবের ওপর যদি যথেষ্ট পরিমাণ কাজ করা হয়ে থাকে তবে পরবর্তীতে গবেষকরা ঐ বিষয়ে কাজ করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন। ফলে বংশাণুতাত্ত্বিক গবেষণায় কিছু মডেল অর্গানিজমের ওপর গবেষণাই এই ক্ষেত্রে গবেষণার ভিত্তিতে পরিণত হয়েছে। মডেল বা আদর্শ জীবের ওপর করা প্রচলিত গবেষণার মধ্যে রয়েছে বংশাণু নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত কাজ এবং বিবর্তন ও ক্যান্সারে বংশাণুর ভূমিকা সংক্রান্ত গবেষণা। গবেষণার জন্যে জীবের বাছাইকরণ আংশিকভাবে নির্ভর করে কিছু সুবিধার ওপরও — সংক্ষিপ্ত সংঘটন সময় এবং সহজ বংশাণুগত পরিচালনার কারণে কিছু জীব বংশাণুগত গবেষণায় বিপুল জনপ্রিয়। বহুল ব্যবহৃত মডেল জীবের মধ্যে রয়েছে ব্যাক্টেরিয়াম ইশেরেকিয়া কোলাই, উদ্ভিদ এরাবিডোপসিস থ্যালিয়ানা, ঈস্ট স্যাকারোমাইসিস সেরাভিসি, নেমাটোড ক্যানোরহ্যাবডিটিস এলিগানস, সাধারণ ফলের মাছি (ড্রোসোফিলা মেলানোজেস্টার), এবং গৃহস্থালির ইঁদুর (মাস মাস্কুলাস)। চিকিৎসা ক্ষেত্রে বংশাণুবিজ্ঞানের গবেষণা চিকিৎসা বংশাণুবিজ্ঞান মানুষের স্বাস্থ্য ও রোগবালাইয়ের সাথে বংশাণুতাত্ত্বিক বৈচিত্রের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণা করে। কোন রোগের সাথে জড়িত অজানা বংশাণু খুঁজে বের করার লক্ষ্যে গবেষকরা জেনেটিক লিংকেজ ও পেডিগ্রি ছক ব্যবহার করে বংশাণুসমগ্রে এর অবস্থান শনাক্ত করার চেষ্টা করেন। কোন জনগোষ্ঠীতে রোগের সাথে সম্পর্কিত বংশাণুসমগ্র খুঁজে বের করতে বিজ্ঞানীরা মেন্ডেলীয় রেন্ডমাইজেশানের সাহায্য নেন, যা কিনা বহুবংশাণুগত বৈশিষ্ট্য ব্যাখ্যায় ব্যবহৃত হয়। কোন সম্ভাব্য বংশাণু শনাক্ত করা গেলে মডেল জীবের ওপর পরবর্তী পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালানো হয়। বংশগতিমূলক রোগবালাই নিয়ে গবেষণার পাশাপাশি বংশাণুোটাইপিক কৌশলের ক্রমবর্ধমান উদ্ভাবন ফার্মাকোগেনেটিক্স এর জন্ম দিয়েছে - যেখানে ওষুধের প্রতি বংশাণুোটাইপের সাড়া লক্ষ্য করা হয়। উত্তরাধিকার সূত্রে না ছড়ালেও, ক্যান্সার এক প্রকার বংশগতিমূলক ব্যাধি।Chapter 18: Cancer Genetics মানবশরীরে ক্যান্সার এর বিস্তৃতি বেশ কিছু সংখ্যক ঘটনার ফলাফল। কোষ বিভাজিত হবার সময় কালেভদ্রে পরিব্যক্তি ঘটে। এসব পরিব্যক্তি সন্তানাদিতে না পৌঁছালেও তা কোষের ব্যবহার কিছুটা বদলে দেয়, যার ফলে তাদের বৃদ্ধি ও বিভাজন দ্রুততর হয়ে যায়। এই প্রক্রিয়া থামানোর জন্যে শরীরের এক ধরনের সুরক্ষামূলক ব্যবস্থা থাকে: অযথাযথভাবে বিভাজিত কোষে বিশেষ সংকেত পাঠানো হয় যা তাদের কোষীয় মৃত্যু ত্বরান্বিত করে, কিন্তু মাঝে মাঝে কোষে এমন পরিব্যক্তি ঘটে যার পরিণামে এই সংকেত অগ্রাহ্য করা হয়। কোষের অভ্যন্তরে এভাবে প্রাকৃতিক নির্বাচন প্রক্রিয়ায় কোষসমূহ তাদের বৃদ্ধি নিশ্চিত করে, যা দেহে টিউমার তৈরি করে যার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন কলা আক্রান্ত হয়। গবেষণার কৌশল ডিএনএ ল্যাবরেটরিতে ডিএনএ নিয়ে গবেষণা করা হয়। ডিএনএ নির্দিষ্ট সিকুয়েন্সে কর্তন করতে বহুল ব্যবহৃত একটি এনজাইম হল রেস্ট্রিকশন এনজাইম, যা ডিএনএকে পরিকল্পিতভাবে ভাগ করতে পারে।Lodish et al. (2000), Chapter 7: 7.1. DNA Cloning with Plasmid Vectors জেল ইলেকট্রোফোরেসিস প্রক্রিয়ায় ডিএনএ দেখা যায়। ডিএনএ খন্ডসমূহ তাদের দৈর্ঘ্য অনুযায়ী বিভক্ত হয়। লাইগেশন এনজাইমের মাধ্যমে ডিএনএ খন্ডসমূহকে পুনঃর্যোজিত করা যেতে পারে এবং বিভিন্ন উৎস থেকে ডিএনএ সংগ্রহ করে তাদের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে গবেষকেরা রিকম্বিন্যান্ট ডিএনএ তৈরি করেন। রিকম্বিন্যান্ট ডিএনএ প্রযুক্তি সাধারণত প্লাজমিডের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয়ে থাকে - যাদের স্বল্প কিছু ডিএনএ বিশিষ্ট বৃত্তাকার বংশাণু বিদ্যমান। এ ধরনের প্লাজমিডকে ব্যাক্টেরিয়ার অভ্যন্তরে প্রবেশ করিয়ে গবেষকেরা সেই প্রবেশকৃত ডিএনএ খন্ডকটুকুর সংখ্যাবৃদ্ধি করেন, যা কিনা আণবিক ক্লোনিং হিসেবে পরিচিত। thumb|right|ই কোলাই কলোনি, আণবিক ক্লোনিং এর উদাহরণ। পলিমারেজ চেইন রিঅ্যাকশনের মাধ্যমেও ডিএনএর সংখ্যাবৃদ্ধি ঘটানো সম্ভব।Lodish et al. (2000), Chapter 7: 7.7. Polymerase Chain Reaction: An Alternative to Cloning ডিএনএর সুনির্দিষ্ট স্বল্প সিকোয়েন্সে পিসিআরের মাধ্যমে পৃথক করে বহুগুণ বর্ধিত করা যায়। ডিএনএর অতি ক্ষুদ্র অংশ বর্ধিত করতে পারে বিধায় নির্দিষ্ট ডিএনএ সিকোয়েন্সের উপস্থিতি নির্ধারণে পিসিআর বহুল ব্যবহৃত পদ্ধতি। ডিএনএ অনুক্রম নির্ণয় ও বংশাণুসমগ্র বিজ্ঞান তথ্যসূত্র পাদটীকা পরিশিষ্ট পরিভাষা অ্যালিল - Allele বিদেশী নাম মেন্ডেল - Mendel বিষয়শ্রেণী:বংশাণুবিজ্ঞান বিষয়শ্রেণী:মূল বিষয়ের নিবন্ধ
ঈশ্বর
https://bn.wikipedia.org/wiki/ঈশ্বর
একেশ্বরবাদী চিন্তাধারায়, ঈশ্বরকে সর্বোচ্চ সত্তা, স্রষ্টা ও আধ্যাত্মিক বিশ্বাসের প্রধান উপাস্য হিসাবে কল্পনা করা।Swinburne, R.G. "God" in Honderich, Ted. (ed)The Oxford Companion to Philosophy, Oxford University Press, 1995. ঈশ্বর সাধারণত সর্বশক্তিমান, সর্বজ্ঞ, সর্বত্র বিরাজমান ও সার্বজনীন হিসাবে ধারণা হয় সেইসাথে তিনি অনন্ত এবং প্রয়োজনীয় অস্তিত্ব থাকেন। ঈশ্বরকে প্রায়শই উৎকর্ষ বা অব্যবস্থা ধারণার সাথে সম্পর্কিত বৈশিষ্ট্যের সঙ্গে নিরাকার বলে ধরে নেওয়া হয়।David Bordwell (2002). Catechism of the Catholic Church, Continuum International Publishing p. 84 ঈশ্বর কথার আক্ষরিক অর্থ আরাধ্য, ভগবান, স্রষ্ঠা, প্রভু, স্বামী বা প্রধান আশ্রয়। বিভিন্ন ধর্মে ঈশ্বরের সংজ্ঞা বিভিন্ন। আব্রাহামিয় ধর্ম (ইহুদি, খ্রীষ্টান, ইসলাম, জেহোবাস ,উইটনেস ইত্যাদি), অদ্বৈত, বিশিষ্টাদ্বৈত, বহুশ্বরবাদী ইত্যাদিদের মতে ঈশ্বর হলো জাগতিক ক্ষমতার সর্বোচ্চ অবস্থানে অবস্থানকারী কোনো অস্তিত্ব । অনেকের মতে, এই মহাবিশ্বের জীব ও জড় সমস্ত কিছুর সৃষ্টিকর্তা ও নিয়ন্ত্রক আছে বলে মনে করা হয় । এ অস্তিত্বে বিশ্বাসীগণ ঈশ্বরের উপাসনা করে, তাদেরকে আস্তিক বলা হয়। আর অনেকে এ ধারণাকে অস্বীকার করে, এদেরকে বলা হয় নাস্তিক। অনেকে ঈশ্বর আছে কি নেই তা সম্বন্ধে নিশ্চিত নয় (যেমন বৌদ্ধদের কিছু সম্প্রদায়)। এদের সংশয়বাদী বলে। আস্তিক সমাজে , ঈশ্বরের ধারণা ধর্ম , ভাষা ও সংস্কৃতিভেদে নানারূপী। ভাষাভেদে একে ইংরেজি ভাষায় গড, এবং বাংলা ও সংস্কৃত ভাষায় ঈশ্বর ইত্যাদি শব্দ ব্যবহৃত হয়। সর্বেশ্বরবাদ ও একেশ্বরবাদ হলো ঈশ্বরবাদের প্রধান দুটি শাখা । সর্বেশ্বরবাদে ক্ষমতার তারতম্য অনুযায়ী একাধিক ঈশ্বর বা অনেক সময় ঐশ্বরিক সমাজে বিশ্বাস করা হয় এবং প্রতিমা প্রতিকৃতি আকারে পরোক্ষভাবে এর উপাসনা করা হয় (যেমন প্রাচীন রোমান, গ্রীক, মিশরের ঈশ্বরসমৃহ) । উল্লেখ্য সনাতন ধর্মের (হিন্দুদের) ক্ষেত্রে প্রতীমার মধ্যে এক কিন্তু নাম রূপ ভেদে ভিন্ন রূপে আপতিত ঈশ্বরকে আহ্বান করে পূজা করা হয়। আর শুধুমাত্র একজন সার্বভৌম ঈশ্বরের ধারণাকে বলা হয় একেশ্বরবাদ । বিভিন্ন ধর্মে ঈশ্বর ইহুদী ধর্ম খ্রিস্টান ধর্মে ঈশ্বরের নাম ইহুদি ধর্মের অনুরূপ। তারা ঈশ্বরকে ইয়াহওয়েহ/যিহোবা, এলোহিম বা আদোনাই নামে ডাকে। যারা এলোহিম নামে ঈশ্বরকে ডাকে তাদের এলোহীয়, যারা ইয়াহওয়েহ নামে ডাকে তাদের ইয়াহওয়েহীয় বলে ডাকা হয়। তবে, তারা খ্রিষ্টধর্মের মত ঈশ্বরের ত্রিত্ববাদে বিশ্বাসী নয়। হিব্রু ভাষায় ঈশ্বরের নাম যিহোবা বা এলোহিম হলেও আরবী ভাষী ইহুদিরা ঈশ্বরকে "আল্লাহ" নামে সম্বোধন করে থাকে। ইসলামের বিভিন্ন ইতিহাস গ্রন্থ ও সীরাত থেকে যার সত্যতা পাওয়া যায়। আরবী ভাষার বাইবেলে ঈশ্বরের সমার্থক হিসেবে কেবলমাত্র আল্লাহ শব্দটি ব্যবহার করা হয়, তবে সেটি সর্বনাম হিসেবে। সনাতন ধর্ম হিন্দুধর্মে ঈশ্বরের ধারণা মূলত নির্দিষ্ট কোনো ঐতিহ্য অথবা দর্শনের ভিত্তিতে তৈরি নয়। চিণ্ময়বাদ, অদ্বৈতবাদ, সর্বেশ্বরময়বাদ, অদ্বৈতবাদ, আস্তিক্যবাদ – সকল প্রকার বিশ্বাসের সমাহার দেখা যায় হিন্দুধর্মে। সনাতন ধর্ম অনুযায়ী জীব-আত্মা শাশ্বত। অদ্বৈত বেদান্তের ন্যায় অদ্বৈতবাদী বা সর্বেশ্বরময়বাদী দর্শন অনুসারে, জীবনের উদ্দেশ্য হল আত্মা ও পরমাত্মার অভিন্নতা বা একাত্মতা অনুভব করা।আত্মা সর্বশেষে পরমাত্মা বা ব্রহ্মে বিলীন হয়। এই কারণেই এই দর্শন অদ্বৈতবাদ নামে পরিচিত। উপনিষদে বলা হয়েছে, মানুষের পরমসত্ত্বা আত্মাকে যিনি ব্রহ্মের সঙ্গে অভিন্ন রূপে অনুভব করতে সক্ষম হন, তিনিই মোক্ষ বা মহামুক্তি লাভ করেন। বৈদান্তে দর্শনের তিনটি মুখ্য ধারা। একটি অদ্বৈত (কেবল একের, যা শুদ্ধ চৈতন্য, অস্তিত্ব আছে আর কিছু নেই। এই জগৎ মায়া মাত্র।), দ্বৈত (এক ঈশ্বর ও তার মায়া। এই মায়ার মধ্যে সর্বভূত। প্রাণ দুই প্রকার জীবাত্মা ও ঈশ্বর বা পরমাত্মা), বিশিষ্টাদ্বৈত। অচিন্ত‍্যবাদী ও ভক্তিবাদী দর্শনে ব্রহ্মের উপর ব্যক্তিত্ব আরোপিত হয়েছে। এই মতানুসারে সম্প্রদায়বিশেষে তাকে বিষ্ণু, ব্রহ্ম, শিব, দেবীরূপে পূজা করা হয়। আত্মা এখানে ঈশ্বরের উপর নির্ভরশীল এবং মোক্ষ নির্ভরশীল ঈশ্বরের প্রতি প্রেম অথবা ঈশ্বরের অণুগ্রহের উপর ।<ref> পরমসত্ত্বা রূপে ঈশ্বর সনাতন ধর্মে ব্রহ্ম, ঈশ্বর, ভগবান বা পরমেশ্বর নামে আখ্যাত। অবশ্য ঈশ্বর শব্দের একাধিক ব্যাখ্যা রয়েছে। মীমাংসাবাদীরা ঈশ্বরে অবিশ্বাস করেন; অপরদিকে সাংখ্যবাদীরা ঈশ্বরের অস্তিত্বকে অস্বীকার করে। আবার অদ্বৈতবাদীরা আত্মা ও ব্রহ্মকে অভিন্ন মনে করেন। জৈন ধর্ম বর্তমানে যে ধর্ম গুলো বিদ্যমান আছে সেগুলো একেশ্বরবাদ, বহুশ্বরবাদ আর অনাশ্বরবাদ। যারা ঈশ্বরে বিশ্বাসী তাঁদের মতে ঈশ্বর মানে হলো- জেনেরেটর, অপারেটর & ডিস্ট্রাক্টর (মানে কেউ একজন আপনাকে তার প্রয়োজনে তৈরি করলেন, পরিচালনা করলেন এবং প্রয়োজন শেষে ধ্বংস করে দিলেন)। তাঁদের মতে ঈশ্বর মানে হলো একটা বিংস বা পার্সন। তাঁদের কথায় প্রশ্ন আসতে পারে যদি ওনি একজন হন তার স্বরূপ কি হতে পারে? ওনারা উত্তর দিবেন ওনি তাহার মত, ওনার কোনো শরিক নাই, ওনার কোনো তুলনা নাই। আবারো প্রশ্ন আসতে পারে ওনি যে একজন আপনি বা আপনারা বুঝলেন বা জানলেন কীভাবে? এটা একটা ধারণা মাত্র আর ধারণা দিয়ে কখনো ধর্ম হয়না। এবার বহুশ্বরবাদ/সনাতনী মতবাদে ফেরা যাক- সনাতনী মতে ওদের ঈশ্বর ব্রহ্মা। ওনি খুব আলৌকিক শক্তির অধিকারি ওনি যখন যা চান তাই করতে পারেন। আবার সনাতনী বেদ শাস্ত্রমতানুসারে ওনি মুক্ত পুরুষ নন। এখন আবারো প্রশ্ন আসতে পারে যেখানে ঈশ্বর নিজেই মুক্ত নন সেখানে তিনি আমাদের কীভাবে রক্ষা করবেন? কীভাবে? কেন? কিজন্য? পৃথিবীতে আসছেন সেটা জানা যেমন জরুরী তার চেয়ে আরও অধিক জরুরী এই দুঃখময় জগতসংসার থেকে মুক্ত হবেন কি করে? বৌদ্ধ ধর্ম ঈশ্বর নেই এই হৃদয়ে সাম্রাজ্য বিস্তার করেছে বৌদ্ধধর্ম। সেটা বড় কথা নয়। থাকলে কতটুকু উপকারে আসতো আর্থমানবে? ফেরা যাক বৌদ্ধধর্মের ঈশ্বরে, বৌদ্ধ ত্রিপিটকের ব্রাহ্মাজাল সুত্র পাট করলে জানতে পারবেন এই বিশ্বব্রাহ্মাণ্ড পরিচালিত হয় পাঁচটা ইউনিভার্সাল রোলসের উপর ভিত্তি করে যার দ্বারা এই বিশ্বব্রাহ্মাণ্ড পরিচালিত হয়। যাকে বলে ইউনিভার্সালত্রুথ। আসুন এবার জানা যাক সেই পাঁচটা ইউনিভার্সাল রোলস কি? যার দ্বারা জগতের সবকিছু পরিচালিত হচ্ছে? ১ঃ চিত্ত নিয়ম। ২ঃ রীত নিয়ম ৩ঃ বীর্য নিয়ম। ৪ঃ ধর্ম নিয়ম। ৫ঃকর্ম নিয়ম। এগুলোই বৌদ্ধধর্মের ঈশ্বর। এই পাঁচটি ইউনিভার্সাল রোলস চক্রাকার নিয়মে চলে। অনেক বৌদ্ধ'রা বলে থাকনে সব কর্মফল আসলে ইহা ভুল বাকি চারটা নিয়ম বা রোলস বাদ দিয়ে কর্মফল একা কিছুই করতে পারেনা। তার মানে আমরা কি জানলাম ঈশ্বর নিরাকার, অপার সমুদ্র, তিনি তার মতন। তার কোনো রুপ আর লিঙ্গ নাই। ঈশ্বর= 0x0=0 তাই সরাসরি বৌদ্ধধর্ম ঈশ্বর অস্বীকার করে। যদি আপনি ঈশ্বরের অবিশ্বাস নাস্তিক আসে বলে মনে করে থাকেন তাহলে জেনে রাখুন বৌদ্ধমতবাদে ঈশ্বর এক কাল্পনিক চরিত্র বা অন্ধবিশ্বাস। বৌদ্ধধর্মে নাস্তিক কাকে বলে জানেন? ত্রিপিটকে বলছেঃ অন্ধবিশ্বাসীগণ নাস্তিক তারা পচাগন্ধ ন্যায়। মাংসভোজী গন নহে। খ্রিস্ট ধর্ম খ্রিস্টান ধর্মে ঈশ্বরের নাম ইহুদি ধর্মের অনুরূপ। তারা ঈশ্বরকে ইয়াহওয়েহ (Yahweh)/যিহোবা (Jehovah), এলোহিম (Elohim) বা আদোনাই (Adonai) নামে ডাকে। যারা এলোহিম নামে ঈশ্বরকে ডাকে তাদের এলোহীয় (Elohim), যারা ইয়াহওয়েহ নামে ডাকে তাদের ইয়াহওয়েহীয় (Yahwist) বলে ডাকা হয়। তবে, তারা ইহুদিদের মত গোঁড়া একেশ্বরবাদী নয়, তারা ঈশ্বরের তিনটি সত্বায় বিশ্বাস করে, যাকে ত্রিত্ববাদ (Trinity) বলা হয়। এ মতবাদ অনুসারে, পিতা যিহোবা, পুত্র যীশু খ্রিষ্ট এবং পবিত্র আত্মা এই তিন সত্বা মিলেই ঈশ্বরের সত্বা গঠিত। যীশু খ্রিস্টকে ঈশ্বরের পুত্র বলা হলেও তাকে ঈশ্বরের মর্যাদা দেওয়া হয়। যীশুকে রিডিমার, ইমানুয়েল ইত্যাদি নামেও ডাকা হয়। আর পবিত্র আত্মাকে ডাকা হয় দেবদূত গাব্রিয়েল নামে। ইসলাম ধর্ম আল্লাহ্ (আরবি: الله‎‎) একটি আরবি শব্দ, ইসলাম ধর্মানুযায়ী যা দ্বারা বিশ্বজগতের একমাত্র স্রষ্টা, প্রতিপালক ও উপাস্যের নাম বোঝায়। "আল্লাহ" শব্দটি প্রধানত মুসলমানরাই ব্যবহার করে থাকেন। "আল্লাহ্" নামটি ইসলাম ধর্মে বিশ্বজগতের সৃষ্টিকর্তার সাধারণভাবে বহুল-ব্যবহৃত নাম। এটি ছাড়াও কিছু মুসলিম তাকে আরো কিছু নামে সম্বোধন করে থাকে যেমন ‘খোদা’, ‘মাবুদ’, ‘প্রভূ’। তবে খোদা নামটি উৎপত্তিগতভাবে পারস্যের জরাথুস্ট্র ধর্মের ঈশ্বরকে ডাকতে ব্যবহৃত হয়। তবে আরব খ্রিস্টানরাও প্রাচীনকাল থেকে "আল্লাহ" শব্দটি ব্যবহার করে আসছেন। বাহাই, মাল্টাবাসী, মিজরাহী ইহুদি এবং শিখ সম্প্রদায়ও "আল্লাহ" শব্দ ব্যবহার করে থাকেন। মুসলমানদের ধর্মগ্রন্থ আল-কুরআনে আল্লাহর ৯৯টি নাম উল্লেখ আছে। আরও ১৮টি নামের উল্লেখ রয়েছে হাদীসগ্রন্থগুলোতে। নামগুলোর কয়েকটির অর্থ হল: একমাত্র উপাস্য, একক স্রষ্টা, রিজিকদাতা, অধিক ক্ষমাকারী, অতিদয়ালু, বিচারদিনের মালিক, রাজাধিরাজ, সর্বজ্ঞ, চিরঞ্জীব, প্রার্থনা শ্রবণকারী, অমুখাপেক্ষী প্রভৃতি। আল্লাহর পরিচয় সম্পর্কে কুরআনে বলা হয়েছে, কুরআনে আরও বলা হয়েছে, ইসলামী বিশ্বাস অনুসারে আল্লাহর কোনো গুণাবলীই সৃষ্টজীবের মত নয়। সৃষ্টজীব যেভাবে শোনে, আল্লাহ সেভাবে শোনেন না। সৃষ্টজীব যেভাবে দেখে, আল্লাহ সেভাবে দেখেন না। আল্লাহর গুণাবলীর ধরন মানুষের অজানা। কুরআনে বলা হয়েছে, তথ্যসূত্র বহিসংযোগ বিষয়শ্রেণী:ধর্ম বিষয়শ্রেণী:মূল বিষয়ের নিবন্ধ বিষয়শ্রেণী:স্রষ্টা দেবতা বিষয়শ্রেণী:দেবদেবী
গ্রিস
https://bn.wikipedia.org/wiki/গ্রিস
থাম্ব|১৮৩২ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত গ্রীস রাজ্যের আঞ্চলিক বিবর্তন গ্রিস () ইউরোপ মহাদেশের দক্ষিণ-পূর্ব অংশের একটি রাষ্ট্র যা বলকান উপদ্বীপের একেবারে দক্ষিণ প্রান্তে অবস্থিত। এর সীমান্তবর্তী রাষ্ট্রগুলো হচ্ছে উত্তরে বুলগেরিয়া, উত্তর মেসিডোনিয়া এবং আলবেনিয়া; পূর্বে তুরস্ক। গ্রিসের মূল ভূমির পূর্বে ও দক্ষিণে এজিয়ান সাগর অবস্থিত, আর পশ্চিমে রয়েছে আইওনিয়ান সাগর। পূর্ব ভূমধ্যসাগরের উভয় অংশে গ্রিসের অনেকগুলো দ্বীপ রয়েছে। গ্রিস ইউরোপ. এশিয়া এবং আফ্রিকার মিলন স্থলে অবস্থিত। বর্তমান গ্রিকদের পূর্বপুরুষ হচ্ছে এক সময়ের পৃথিবী বিজয়ী প্রাচীন গ্রিক সভ্যতা, বাইজান্টাইন সম্রাজ্য এবং প্রায় ৪ শতাব্দীর অটোমান সম্রাজ্য। এই দেশ পশ্চিমা বিশ্বের জ্ঞান বিজ্ঞানের সূতিকাগার এবং গণতন্ত্রের জন্মদায়ক স্থান হিসেবে সুপরিচিত। গ্রিসের আরও কিছু বৃহৎ অবদান হচ্ছে পশ্চিমা দর্শন, অলিম্পিক গেম্‌স, পশ্চিমা সাহিত্য, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার এবং নাটক। সব মিলিয়ে গ্রিসের সভ্যতা সমগ্র ইউরোপে এক সময়ের সবচেয়ে প্রভাবশালী সভ্যতা হিসেবে পরিগণিত হত। বর্তমানে গ্রিস একটি উন্নত দেশ এবং ১৯৮১ সাল থেকে ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য।। এছাড়া এটি ২০০১ সন থেকে ইকোনমিক অ্যান্ড মনিটারি ইউনিয়ন অফ দ্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ১৯৫১ সাল থেকে ন্যাটো এবং ১৯৬০ সাল থেকে ওইসিডি-এর সদস্য হিসেবে আছে। ইতিহাস প্রাচীন কাল এজিয়ান সাগরের তীরে সুপ্রাচীন কালে ইউরোপের প্রথম উন্নত সভ্যতা গড়ে উঠেছিল, বর্তমান আধুনিক ইউরোপকে এর ফসল বললে অত্যুক্তি হবে না। Minoan এবং Mycenean সভ্যতার উত্থানের ফলে গ্রিসের বিভিন্ন অঞ্চলে স্বতন্ত্র জেলা এবং সরকার ও সমাজ কাঠামো বিশিষ্ট রাজ্যের সৃষ্টি হয়। এই রাজ্যগুলো স্পার্টা এবং এথেন্সের অধীনে একত্রিত হয়ে পার্সিয়ানদের অগ্রযাত্রাকে প্রতিহত করেছিল। এথেন্সে গ্রিসের প্রথম সমৃদ্ধ সভ্যতা প্রতিষ্ঠিত হয়। কিন্তু পরবর্তীকালে এথেন্স ও স্পার্টার মধ্যে সংঘাতের সৃষ্টি হয় যার পরিণতি পেলোপোনেশীয় যুদ্ধ। এ সময় পার্সিয়ানদের হাতে স্পার্টার পতন হয়। এর পর মাত্র এক শতাব্দীর মধ্যে সকল গ্রিকরা আলেকজান্ডার দ্য গ্রেটের নেতৃত্বে একত্রিত হয়ে পার্সীয়দের প্রতিহত করে। ১৪৬ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এখানে রোমান সম্রাজ্যের সূচনা হয়। রোমান যুগ রোমান যুগের সূচনায় হেলেনীয় সমাজ ও সংস্কৃতির কোন পরিবর্তন না হলেও এর ফলে আবশ্যিকভাবেই গ্রিস তার রাজনৈতিক স্বাধীনতা হারায়। খ্রিস্ট ধর্ম বিকাশের পূর্ব পর্যন্ত এখানে হেলেনীয় সংস্কৃতি টিকে ছিল। গ্রিস রোমের একটি প্রদেশে পরিণত হয় এবং তখনও গ্রিস প্রবল প্রতাপে পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় অঞ্চলের সংস্কৃতিকে প্রভাবান্বিত করে চলে। এরপর রোমান সাম্রাজ্য দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে যায়; একভাগের নাম পূর্ব রোমান সম্রাজ্য যা গ্রিকদের সাম্রাজ্য নামে প্রতিষ্ঠা পায় এবং পরবর্তীকালে বাইজান্টাইন সম্রাজ্য নাম ধারণ করে। অন্য অংশ ছিল কনস্টান্টিনোপ্‌ল কেন্দ্রিক যার নাম ছিল বাইজান্টিয়াম। বাইজান্টাইন রাজত্বের সময় গ্রিক আগ্রাসী সকল শক্তির মধ্যে হেলেনীয় ভাবধারার প্রভাব সৃষ্টিতে সমর্থ হয় এবং এ সময়েই সিসিলি ও এশিয়া মাইনর থেকে অনেকে গ্রিসে বসতি স্থাপন করে। একাদশ ও দ্বাদশ শতাব্দীকে গ্রিসে বাইজান্টাইন শিল্পকলার স্বর্ণযুগ বলা হয়। তবে ১২০৪ থেকে ১৪৫৮ সালের মধ্যে সংঘটিত ক্রুসেডের সময় ধর্মের নামে প্রতিষ্ঠিত কিছু সেনাদল দ্বারা গ্রিস আক্রান্ত হয়। ১৪৫৩ সালের ২৯ মে তারিখে কনস্টান্টিনোপ্‌লের পতনের পূর্ব পর্যন্ত এখানে বাইজান্টাইন সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠিত ছিল। রাজনীতি গ্রিসের রাজনীতি একটি সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক বহুদলীয় গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাঠামোয় সংঘটিত হয়। সরকারপ্রধান হলেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রের নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের উপর ন্যস্ত। আইন প্রণয়নের ক্ষমতা সরকার এবং আইনসভা উভয়ের উপর ন্যস্ত। বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগ ও আইনসভা হতে স্বাধীন। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ প্রশাসনিকভাবে গ্রিসে মোট ১৩ টি প্রশাসনিক অঞ্চল রয়েছে। এরা আবার সর্বমোট ৫৪ টি প্রিফেকচারে বিভক্ত। Map সংখ্যা] প্রশাসনিক অঞ্চল রাজধানী আয়তন (বর্গ কি.মি.) জনসংখ্যা </tr> 300px|মানচিত্রে গ্রিসের প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ১ আট্টিকি এথেন্স ৩,৮০৮ ৩,৭৬১,৮১০ ২ কেন্দ্রীয় গ্রিস লিবাদিয়া ১৫,৫৪৯ ৬০৫,৩২৯ ৩ কেন্দ্রীয় মেসিডোনিয়া থেসালোনিকি ১৮,৮১১ ১,৮৭১,৯৫২ ৪ ক্রিতি ইরাক্লিয়ো ৬,৩৩৬ ৬০১,১৩১ ৫ পূর্ব মেসিডোনিয়া ও থ্রেস কোমোটিনি ১৪,১৫৭ ৬১১,০৬৭ ৬ ইপিরোস ইওয়ান্নিনা ৯,২০৩ ৩৫৩,৮২০ ৭ ইওনীয় দ্বীপপুঞ্জ কেরকিরা ২,৩০৭ ২১২,৯৮৪ ৮ উত্তর এজিয়ান মিটিলিনি ৩,৮৩৬ ২০৬,১২১ ৯ পেলোপোনেস ট্রিপলি ১৫,৪৯০ ৬৩৮,৯৪২ ১০ দক্ষিণ এজিয়ান এরমুপলি ৫,২৮৬ ৩০২,৬৮৬ ১১ থেসালিয়া লারিসা ১৪.০৩৭ ৭৫৩,৮৮৮ ১২ পশ্চিম গ্রিস পাত্রা ১১,৩৫০ ৭৪০,৫০৬ ১৩ পশ্চিম মেসিডোনিয়া কোজানি ৯,৪৫১ ৩০১,৫২২ - আথোস পর্বত [কারিয়েস]] ৩৯০ ২,২৬২ ভূগোল গ্রীস পাহাড়ের একটি দেশ। এগুলি দেশের উত্তর-পশ্চিমে শুরু হয় এবং সমুদ্রের ঢেউয়ের নীচে পিছলে না যাওয়া পর্যন্ত দক্ষিণ-পূর্ব দিকে চালিত হয়; তাদের শিখর পর্যায়ক্রমে ভূপৃষ্ঠ ভেঙে হাজার হাজার দ্বীপ তৈরি করে যার জন্য গ্রীক জলরাশি বিখ্যাত এই পর্বতমালাগুলি ল্যান্ডস্কেপ জুড়ে গ্রাম এবং শহরগুলির বণ্টন নির্ধারণ করে এবং বৃষ্টিপাতের নিদর্শন এবং রাস্তার নেটওয়ার্ককে আকার দেয়, মূল ভূখণ্ডকে ছোট ছোট বাসযোগ্য উপত্যকা এবং সমভূমিতে বিভক্ত করে। এই ভাঙ্গা আড়াআড়িটি গ্রিসকে বিস্তৃত পরিবেশগত পরিস্থিতি দখল করেছে, যার মধ্যে অনেকগুলি বৃহত্তর আধুনিক কৃষির জন্য উপযুক্ত নয় এবং এগুলি 'বন্য' এবং পাথুরে অবস্থায় ফিরে গেছে। এটি প্রাক-রাফেলাইট চিত্রশিল্পীদের দ্বারা কল্পনা করা কৌতুকময় ব্রুকস এবং ছায়াময় সূর্যের আলোয় বনভূমিতে ভরা আইডলিক গ্রামীণ ভূদৃশ্য নাও হতে পারে, তবে এটি এর কাঁচা এবং শিরোনামহীন রাজ্যে দুর্দান্ত ইউরোপের সৈকত এবং উপসাগর খালি পরিসংখ্যানের ভাষায়, গ্রীস ১৩১,৯৪০ বর্গ কিমি (৫০,৯৪২ বর্গ মাইল) আয়তন এবং ১৩,৬৭৬ কিলোমিটার (৮,৪৯৮ মাইল) উপকূল রেখা রয়েছে। এটিতে প্রায় ২০০০ টিরও বেশি দ্বীপ রয়েছে, যার মধ্যে ১৭০ টি স্থায়ীভাবে বসবাস করে are একটি ভৌগোলিকভাবে জটিল দেশ, এটি বর্ণনার স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য নিম্নলিখিত অঞ্চলগুলিতে বিভক্ত করা যেতে পারে: অ্যাথেন্স এবং অ্যাটিকা রাজধানী এবং এর অভ্যন্তরীণ অঞ্চলটি বিস্তৃত উপদ্বীপে অবস্থিত যা এজিয়ান সাগরে প্রবেশ করে। অ্যাথেন্সে এখন স্বয়ং ৪,৪,০০,০০০ লোক রয়েছে এবং তিনটি পর্বতমালা এবং সমুদ্রের মধ্যবর্তী সমভূমিটি পূর্ণ করেছে বিমানবন্দর (এলিথেরিয়াস ভেনিজেলোস) ইমিটোস রেঞ্জের সুদূর পাশে পূর্বদিকে অবস্থিত তবে এটি রাজধানীর সাথে অত্যন্ত সুসংযুক্ত। অ্যাটিকা তার উৎপাদিত জলপাইয়ের তেলের গুণগতমানের জন্য বিখ্যাত ছিল, তবে রাজধানীতে অফার দেওয়ার কারণে বাসিন্দারা চাকরির সুযোগের দিকে মনোনিবেশ করায় অনেক কৃষিক্ষেত্র ত্যাগ করা হয়েছে। পেলোপনিজ পেলোপনিজ একটি বিশাল উপদ্বীপ যা করিন্থ শহরের কাছে উত্তর-পূর্বে সরু ইস্টমাস দ্বারা সবেমাত্র মূল ভূখণ্ডের সাথে সংযুক্ত ছিল। যেহেতু এই ফালাটি এখন করিন্থ খাল দিয়ে কেটে ফেলা হয়েছে (যা উপদ্বীপের চারপাশে বিপজ্জনক ভ্রমণকে তীব্রভাবে সংক্ষিপ্ত করে তোলে) এটি প্রযুক্তিগতভাবে একটি দ্বীপে পরিণত হয়েছে; গ্রীক রাষ্ট্রকে সংজ্ঞায়িত করে এমন অনেকের মধ্যে সর্বশেষতম। এর ভর উত্তর-দক্ষিণে প্রবাহিত দুটি দীর্ঘ পর্বত শৃঙ্খল এবং উত্তর উপকূল এবং মধ্য অঞ্চল সহ পূর্ব-পশ্চিমে প্রবাহিত পাহাড়ের আরও একটি ভর দ্বারা বিভক্ত। উত্তর এবং মধ্য পর্বতমালা অত্যন্ত ভাল জল সরবরাহ করা হয়, এবং বন এবং সুন্দর জর্জে ভরা হয়। দক্ষিণে লাকোনিয়া এবং মেসিনিয়ার সমভূমি দ্বারা আধিপত্য রয়েছে, এর উত্তর অংশটি সুন্দর বালুকাময় সৈকতগুলির জন্য বিখ্যাত। এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জগুলি প্রচলিতভাবে বিভিন্ন গ্রুপে বিভক্ত: আরগো-সারোনিক, সাইক্ল্যাডিক, স্পোরাদিস, ডোডেকানিজ, পূর্ব এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জ (সামোস, চিয়স, লেসবোস ইত্যাদি) এবং আরও কয়েকটি যেমন such ক্রিট এবং সামোথ্রেস যা হয় এত বড় যে তারা নিজেরাই দাঁড়াতে পারে বা অন্যের থেকে খুব দূরে একটি সহজে সংজ্ঞায়িত গোষ্ঠীতে অন্তর্ভুক্ত হয়। এগুলি সাধারণত চুনাপাথর বা গ্রানাইট দিয়ে গঠিত, যদিও দক্ষিণ ডোডেকানিজের কয়েকটি দ্বীপ আগ্নেয় শিল বা বেসাল্ট। তাদের অনেকের ভূগর্ভস্থ জলের সামান্য পরিমাণ রয়েছে, যা তাদের কৃষিক্ষেত্রকে সীমাবদ্ধ করে, যদিও তাদের মধ্যে কিছু চমৎকার ওয়াইন উৎপাদন করে। ট্যুরিজম আবির্ভাবের আগে, তাদের বেশিরভাগই সমুদ্র থেকে জীবিকা নির্বাহ করেছিলেন এবং ফিশিং গ্রামগুলিতে হোয়াইটওয়াশ করা ঘরগুলি হ'ল গ্রীক আর্কিটেকচারের কথা ভাবা হলে মনে করা হয় প্রত্নতাত্ত্বিক দৃশ্য। মধ্য গ্রীস এবং থেসালি থেসালি এবং বোয়েটিয়ার সমভূমিগুলি পুরোপুরি পর্বতমালা এবং এজিয়ান সাগরকে আরোপিত এবং গ্রীসের সবচেয়ে ধনী কৃষিক্ষেত্র: থিসালিয়ান বৃহত্তম, এবং প্রচুর পরিমাণে ভুট্টা, চাল, তামাক এবং ফল উৎপাদন করে; বোটিয়ান সিরিয়াল এবং তুলা উৎপাদন করে এবং এটি তার গবাদি পশুদের জন্য বিখ্যাত। কামভৌনিয়ান পর্বতমালা এই অঞ্চলটি ম্যাসেডোনিয়া থেকে উত্তরে পৃথক করে এবং পিন্ধোস পরিসর এপিরাস থেকে পশ্চিমে বিভক্ত করে, আর পার্নাসসোস পর্বতগুলি দক্ষিণে যায়। এই আধুনিকতম পরিসীমা দুটি অভিজাত স্কিইং রিসর্ট রয়েছে যা এথেন্স থেকে ডে ট্রিপগুলির মাধ্যমে সহজেই অ্যাক্সেস করা যায়। এপিরাস, ম্যাসেডোনিয়া এবং থ্রেস পিন্ধোস পর্বতমালার শিখরগুলির দ্বারা এপিরাসের আধিপত্য রয়েছে, যা দক্ষিণ-পূর্ব দিকে প্রবাহিত হওয়ার সাথে সাথে মেঘগুলি ধরে ফেলে, ফলস্বরূপ এটি গ্রীসের সবচেয়ে আর্দ্রতম অঞ্চল। রাগড এবং রিমোট, এটি জনবহুল এবং দরিদ্র, তবে চমকপ্রদ সুন্দর দৃশ্যে পূর্ণ। থ্রেসের রোধোপি পর্বতমালা একইভাবে শক্তভাবে আবদ্ধ এবং এই অঞ্চলের বেশিরভাগ অংশ বনভূমি যা পাহাড় এবং উপত্যকাগুলিকে কম্বল করে। মেসিডোনিয়া বিশেষত খনিজ সম্পদে সমৃদ্ধ, তবে এখানে প্রচুর সংখ্যক প্রাণিসম্পদ রয়েছে। এই অঞ্চলের সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হ'ল উত্তর-পশ্চিমের হ্রদগুলি, যা আলবেনিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলি এবং ম্যাসেডোনিয়ার প্রাক্তন যুগোস্লাভিয়ান প্রজাতন্ত্রের সাথে ভাগ করা রয়েছে। আয়নিয়ান দ্বীপপুঞ্জ আয়নিয়ান দ্বীপপুঞ্জগুলি গ্রিসের পশ্চিম উপকূলে ছয়টি বড় দ্বীপ নিয়ে গঠিত এবং জলবায়ুর দিক থেকে তারা মূল ভূখণ্ডের এই অংশের সাথে এজিয়ান দ্বীপপুঞ্জের চেয়ে অনেক বেশি কাছাকাছি রয়েছে। অপেক্ষাকৃত উচ্চ স্তরের বৃষ্টিপাতের অর্থ তারা ভারী বৃক্ষযুক্ত এবং তাদের ভূদৃশ্যটি এপিরিসের মতোই রুক্ষ এবং পর্বতমালা। তারা কিছু ভাল ওয়াইন এবং ফল উৎপাদন করে, এবং বসন্তে পুষ্পিত বন্যফুলগুলি আশ্চর্যজনকভাবে ল্যান্ডস্কেপকে রেন্ডার করে। অর্থনীতি গ্রিসের অর্থনীতি মূলত সেবাখাত নির্ভর। গ্রিস বেশ ধনী একটি দেশ। যদিও শিল্প বিকাশ এবং পর্যটনের কারণে সাম্প্রতিক দশকে গ্রিসের অর্থনীতি উন্নতি হয়েছে , দেশটি একটি বৃহত এবং মারাত্মক অর্থনৈতিক সঙ্কট থেকে বেরিয়ে আসছে। ২০০২ সালের জানুয়ারী থেকে গ্রীসে টাকার মুদ্রা ইউরো, যা নাটকের পরিবর্তে । ২০০৪ সালের অলিম্পিক গেমসের প্রস্তুতি গ্রীক অর্থনীতিকে প্ররোচিত করেছিল। গত বছরগুলিতে, দেশটি একটি মারাত্মক ঋণ সংকটের মুখোমুখি হয়েছিল এবং এর অনেকগুলি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিল, যেমন উন্নয়নের স্বল্প হার এবং বৃহত বেকারত্ব (ডিসেম্বর ২০১২ সালে ২৫%)। অর্থনৈতিক বৈশিষ্ট্য এর অর্থনীতি গ্রীস হয় ১৫ তম বৃহত্তম অর্থনীতির ১৭ সদস্যের ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং নামমাত্র গ্রস ডোমেস্টিক উৎপাদন (২০১২) দ্বারা বিশ্বের ৩৪তম বৃহত্তম দেশ। একটি উন্নত দেশ, গ্রীস অর্থনীতির পরিষেবা খাত (৮৫%) এবং শিল্প (১২%) উপর ভিত্তি করে, যখন কৃষিক্ষেত্র জাতীয় অর্থনৈতিক আয়ের মাত্র ৩% নিয়ে গঠিত। গ্রিসের সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক শিল্প হলো পর্যটন এবং বণিক পরিবহন। প্রকৃতপক্ষে, প্রতি বছর প্রায় ২০ মিলিয়ন আন্তর্জাতিক পর্যটক গ্রিসে যান, যা এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের) ৭ম এবং বিশ্বের ১৬তম অবস্থানে রয়েছে। মার্চেন্ট শিপিংয়ের ক্ষেত্রে, গ্রিস বিশ্বের বৃহত্তম বণিক সামুদ্রিক হিসাবে এটি বিশ্বের মোট ক্ষমতার ১৬% আওতাভুক্ত। ১৯৮২ সালে, গ্রীস ইউরোপীয় সম্প্রদায়ের (পরে ইউরোপীয় ইউনিয়ন) এর সদস্য হয়ে ওঠে। ২০০২ সালের জানুয়ারিতে ইউরো দেশটির সরকারী মুদ্রায় পরিণত হয়, ৩৪০.৭৫ ড্রাচমে ইউরোর বিনিময় হারে ড্রচমা প্রতিস্থাপন করে। গ্রিস আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল, ওয়ার্ল্ড ট্রেড অর্গানাইজেশন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা এবং অন্যান্য অনেক বিশ্ব আর্থিক সংস্থারও সদস্য। জনসংখ্যা গ্রিসের জনসংখ্যা ১,১৩,০৫,১১৮ জন (২০১১ সন অনুযায়ী) সংস্কৃতি আরও দেখুন পোমাক মুসলিম মুসলিম স্লাভ গ্রীক মুসলিম তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:গ্রিস বিষয়শ্রেণী:ইউরোপের রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টান রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ভূমধ্যসাগরীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ওইসিডি সদস্য বিষয়শ্রেণী:আন্তঃমহাদেশীয় রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:বলকান রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
টমাস ম্যাল্থাস
https://bn.wikipedia.org/wiki/টমাস_ম্যাল্থাস
REDIRECTটমাস ম্যালথাস
টমাস ম্যালথাস
https://bn.wikipedia.org/wiki/টমাস_ম্যালথাস
right|thumb|টমাস ম্যালথাস টমাস রবার্ট ম্যালথাস, এফআরএস (FRS) (জন্ম ফেব্রুয়ারি ১৭৬৬ - মৃত্যু ডিসেম্বর ২৩, ১৮৩৪)Several sources give Malthus's date of death as 15 December 1834. See Meyers Konversationslexikon (Leipzig, 4th edition, 1885–1892), "Biography" by Nigel Malthus (the memorial transcription reproduced in this article). However, the article in gives 23 December 1834. একজন ইংরেজ অর্থনীতিবিদ ও জনমিতিবিদ। তিনি অর্থনীতি ও জনসংখ্যা বিষয়ক ম্যালথাসের তত্ত্ব প্রদানের জন্য বিখ্যাত। জীবনী thumb|Essay on the principle of population, 1826 টমাস রবার্ট ম্যালথাসের জন্ম ১৭৬৬ সালের ১৩ ফেব্রুয়ারি এক ধনাঢ্য পরিবারে। তার পিতা ড্যানিয়েল ম্যালথাস ছিলেন দার্শনিক ডেভিড হিউম এবং জাঁ জাক রুসোর বন্ধু। তিনি ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের জেসাস কলেজে ১৭৮৪ খ্রিষ্টাব্দে ভর্তি হন। সেখানে তিনি বিভিন্ন বিষয়ে পড়াশোনা করেন, এবং ইংরেজি বক্তৃতা, লাতিন ভাষা, এবং গ্রিক ভাষায় পুরস্কার পান। তবে তার প্রিয় বিষয় ছিল গণিত। তিনি ১৭৯১ সালে মাস্টার্স ডিগ্রি লাভ করেন, এবং দুই বছর পর জেসাস কলেজের ফেলো নির্বাচিত হন। অর্থশাস্ত্রে তার অবদানঃ ১৭৯৮ সালে তিনি বহুল বিতর্কিত ‘An Essays On the Principle of population" অন দ্য প্রিন্সিপল অব পপুলেশ প্রকাশ করার পর আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে চলে আসেন। এখানে বহুল বিতর্কিত বলার কারণ তিনি এতে এমন ভয়ানক এক ভবিষ্যতের চিত্র তুলে ধরেছেন, যা আলোচনার পাশাপাশি তুমুলভাবে হয়েছে বিতর্কিত। রবার্ট ম্যালথাস তার এসেতে বলেন, মানুষ বাড়ে জ্যামিতিক হারে (২, ৪, ৮, ১৬, ৩২...) আর খাদ্য উৎপাদন বাড়ে গাণিতিক হারে (২, ৩, ৪, ৫, ৬...) আর প্রতি ২৫ বছরে জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়। যেহেতু খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি জনসংখ্যা বৃদ্ধির তুলনায় অনেক পিছিয়ে পড়বে, নষ্ট হবে ভারসাম্য, এনে দেবে দুর্ভিক্ষ। খাবার না পেয়ে বাড়তি জনসংখ্যা বিলীন হয়ে যাবে। তিনি লক্ষ করেছেন, সব মনুষ্য সমাজে এমনকি কলুষিত সমাজেও প্রধান প্রবণতা জনসংখ্যার বৃদ্ধি ঘটানো। এ সার্বক্ষণিক প্রবণতা মানুষকে অত্যন্ত ভয়াবহ পরিণতির দিকে ঠেলে দেবে। এ অবস্থা মোকাবেলার জন্য তিনি দুই ধরনের প্রতিরোধকের কথা বলেছেন। ১.পজেটিভ(এর আওতায় পড়ে দুর্ভিক্ষ, অসুখ-বিসুখ ও মহামারী এবং যুদ্ধ)। ২.প্রিভেন্টিভ বা নিরোধক; (এর মধ্যে রয়েছে— গর্ভপাত, জন্মনিয়ন্ত্রণ, পতিতাবৃত্তির সম্প্রসারণ, কৌমার্য ধরে রাখা, বিয়ে পিছিয়ে দেয়া) ম্যালথাসের সময় পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ১.১ বিলিয়ন, ২৫ বছর পর তা ২ বিলিয়নে পৌঁছবে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সর্বনাশা পরিণতির সমাধানের জন্য যদি দুর্ভিক্ষ, অসুখ এবং যুদ্ধের ওপর নির্ভর করতে হয়, তাহলে অর্থনীতির চক্র ভেঙে যাবে। তিনি বলেছেন, খাদ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির তুলনায় যদি শ্রমিকের সরবরাহ বেড়ে যায়, তাহলে প্রকৃত মজুরি কমে যাবে, জীবনধারণ ব্যয় বেড়ে যাবে। ফলে সংসার প্রতিপালন দুরূহ হয়ে উঠবে আর তা জনসংখা বৃদ্ধি প্রতিহত করতে সাহায্য করবে। খাদ্য উৎপাদন ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির অসামঞ্জস্যপূর্ণ খতিয়ান শেষ পর্যন্ত ডেকে আনবে ‘Malthusian Catastrophe’ বা ম্যালথাসীয় ধ্বংসযজ্ঞ। এ রকম অনিবার্য ধ্বংসযজ্ঞের কথা রবার্ট ম্যালথাস না লিখলেও অর্থনীতিবিদ জুলিয়ান সাইমন এ ধারণাকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। ম্যালথাস বরং জনসংখ্যার গতিশীলতার একটি অভিব্যক্তিবাদী সামাজিক সমাধান দিতে চেষ্টা করেছেন। তার ১৭৯৮ সালের রচনায় আটটি বিষয় উঠে এসেছে: ১. ‘নিতান্ত প্রাণ ধারণ স্তরের’ অর্থনীতি জনসংখ্যা বৃদ্ধি সীমিত করে আনে। ২. নিতান্ত প্রাণ ধারণ স্তরের উন্নতি ঘটলে জনসংখ্যাও বৃদ্ধি পায়। ৩. জনসংখ্যা বৃদ্ধির চাপ অন্যান্য উৎপাদন বৃদ্ধিতে প্রণোদনা প্রদান করে। ৪. উৎপাদন বৃদ্ধি আবার জনসংখ্যা বৃদ্ধিকে উত্সাহিত করে। ৫. যেহেতু উৎপাদনশীলতার বৃদ্ধি জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়, পৃথিবীর ধারণক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গতি রাখার জন্য কঠোরভাবে জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণ করার প্রয়োজন হবে। ৬. যৌনতা, কাজকর্ম এবং সন্তানসন্ততির ব্যাপারে ব্যক্তিগত লাভক্ষতির হিসাবই সংসার বড় হবে না সংকুচিত হবে, তা নির্ধারণ করে। ৭. জনসংখ্যার চাপ নিতান্ত প্রাণ ধারণ স্তর পেরিয়ে গেলেই জনসংখ্যা নিয়ন্ত্রণের স্বয়ংক্রিয় বিষয়গুলো কাজ করতে শুরু করে। ৮. এই নিয়ন্ত্রণের বিশেষ প্রভাব পড়বে বৃহত্তর সামাজিক-সাংস্কৃতিক পদ্ধতির ওপর। (ম্যালথাস সামাজিক অনাচার, বিপন্নতা ও দারিদ্র্যের দিকে ইঙ্গিত করেছেন।) ছেড়েছে। ম্যালথাস যে দ্রুততায় জনসংখ্যা বৃদ্ধির ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন, বাস্তবে তা ছিল আরো শ্লথ (আফ্রিকা ও এশিয়ার কিছু দেশ বাদে)। অন্যদিকে ম্যালথাসের গাণিতিক হারকে টেক্কা দিয়ে খাবারের উৎপাদন বেড়েছে অবিশ্বাস্য রকম অধিক হারে। কাজেই যে নারকীয় যজ্ঞ দেখার সম্ভাবনা ছিল, তা শেষ পর্যন্ত ঘটেনি। বরং ম্যালথাসের আমলের তুলনায় মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক বেড়ে যায়। অন্যদিকে ম্যালথাস তার Principles of Political Economy বইয়ে ডেভিড রিকারড এর যুক্তি খণ্ডন করেছেন এবং সেই সাথে Jean Baptiste Say এর law কে প্রত্যাখ্যান করেছেন। say’s law অনুসারে কোন পন্যের যোগানই তার চাহিদা কে বৃদ্ধি করে। say এর মতে পন্যের অতিরিক্ত যোগান মন্দা তৈরিতে প্রভাব ফেলেনা। তিনি আর বলেন স্বভাবতই মানুষের চাহিদা সবসময় একটু বেশিই থাকে আর কোন পণ্যের অতিরিক্ত যোগান অন্যান্য পণ্যের উৎপাদনকে তরান্বিত করে আর এইভাবে বাজারে একটা ভারসাম্য তৈরি হয়। কিন্তু ম্যালথাস say এর এই বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করে বলেন দ্রবের যোগান কখনো চাহিদা বৃদ্ধি বাঁ নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না আর পন্যের অতিরিক্ত যোগান বাজার কে অস্থিতিশীল করে তোলে। তিনি আর বলেন মানুষের চাহিদা এবং উৎপাদনের কারণ গুল স্বাধীন। আর এইভাবে তিনি "effective demand," এর ধারণা নিয়ে আসেন। যার মানে হচ্ছে মানুষ কোন দ্রব্য বেশি বাঁ কোন দ্রব্য কম কিনবে তা নির্ভর করবে দ্রব্য বাঁ সেবার দামের উপর। তিনি তার Principles of Political Economy বইয়ে আর বলেন চাহিদার তুলনায় দ্রবের যোগানের আধিক্য অর্থব্যাবস্থাকে সর্বদা মন্দার দিকে ধাবিত করে আর সেই জন্য তিনি সরকারি ব্যয় বৃদ্ধি এবং বিলাস বহুল পণ্য আর সেবার জন্য ব্যক্তিগত বিনিয়োগ এর কথা বলেছেন। ম্যালথাস পৃথিবীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ বস্তুনিষ্ঠ জ্ঞানী অর্থনীতিতে সবচেয়ে বড় নাড়া দিয়ে ২৯ ডিসেম্বর ১৮৩৪ সালে মৃত্যুবরণ করেন। তার জনসংখ্যাতত্ত্বে অনেক দুর্বলতা থাকার পরও প্রথম মহাযুদ্ধোত্তর অর্থনীতিবিদদের মেনে নিতে হয়েছে— ম্যালথাসই ছিলেন সবচেয়ে বস্তুনিষ্ঠ অর্থনীতিবিদ। একালের অর্থনীতিবিদরাও তা-ই মনে করেন। তার তত্ত্বের যথার্থতা এখনো ফুরিয়ে যায়নি। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:১৭৬৬-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৮৩৪-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:১৮শ শতাব্দীর অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:১৮শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক বিষয়শ্রেণী:১৯শ শতাব্দীর পুরুষ লেখক বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ প্রাবন্ধিক বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ ধর্মীয় লেখক বিষয়শ্রেণী:চার্লস ডারউইন বিষয়শ্রেণী:রয়েল সোসাইটির সভ্য
ব্যবস্থাপনা
https://bn.wikipedia.org/wiki/ব্যবস্থাপনা
thumb|right|upright=0.9|মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কোস্ট গার্ডের জন্য একটি প্রতিষ্ঠানের তৈরী চার্ট সেই সংস্থায় পরিচালিত ব্যবস্থাপনা ভূমিকাগুলির শ্রেণিবিন্যাস দেখায়। ব্যবস্থাপনা () হলো কোন নির্দিষ্ট লক্ষ্য বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে এক বা একাধিক ব্যক্তির সমন্বয়ে গঠিত কোন গোষ্ঠীর উপর কর্তৃত্ব স্থাপন ও নিয়ন্ত্রণ-এর মাধ্যমে, প্রতিষ্ঠানের নিয়োজিত উপকরণ (মানবীয় ও বস্তুগত) কার্যকর ব্যবহারের একটি ধারাবাহিক, সার্বজনীন (সক্রেটিসের মতে, ব্যবস্থাপনা সার্বজনীন) সামাজিক প্রক্রিয়া, যা একটি মূল্যবান অর্থনৈতিক সম্পদ। ইংরেজি Management ( to handle- চালনা করা বা পরিচালনা করা ) শব্দটি ল্যাটিন বা ইতালীয় Maneggiare ( to train up the horse- অশ্বকে প্রশিক্ষিত করে তোলা বা পরিচালনার উপযোগী করে তোলা) শব্দ থেকে সৃষ্ট, যা কালের বিবর্তনে মানুষকে প্রশিক্ষিত করে তোলে, তার নিকট হতে কাজ আদায় করে নেয়ার সাথে সম্পর্কযুক্ত হয়ে পড়েছে। সমাজ বা সমাজ সংশ্লিষ্ট পক্ষের সম্পৃক্ততার কারনে 'ব্যবস্থাপনা' জ্ঞানের অন্যতম একটি শাখায় পরিণত হয়েছে। ব্যবস্থাপনা ব্যবস্থাপনা হল সেই প্রক্রিয়া যা ৫টি ফাংশন (planning, organizing,Staffing, leading, controlling) এর মাধ্যমে কোন প্রতিষ্ঠানের যে লক্ষ্যগুলো থাকে, তা অর্জন করে। প্রতিষ্ঠান যখন একদল মানুষ একত্রে নিয়মতান্ত্রিক ভাবে (systematic manner) কিছু কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য (objectives) অর্জনের লক্ষ্যে একসাথে কাজ করে তখন তাকে প্রতিষ্ঠান বলে। প্রতিষ্ঠানের ৪টি মূল বিষয় (issue) থাকেঃ ১) Objective, ২) People, ৩) Structure, ৪) Technology পরিকল্পনা কোন প্রতিষ্ঠানের লক্ষ্যগুলো ঠিক করা আর সেগুল অর্জন করার সবচেয়ে ভাল উপায় আগেই ঠিক করে রাখাই পরিকল্পনা (planning)। লক্ষ্য অর্জনের উদ্দেশ্যে ভবিষ্যতের অগ্ৰিম সিদ্ধান্ত গ্রহণ হচ্ছে পরিকল্পনা। সংগঠিত করা কোন প্রতিষ্ঠানের পরিকল্পিত লক্ষ্যগুলো অর্জনের জন্য তার সম্পদ (resources) কীভাবে বন্টিত হবে তা ঠিক করা ও সে অনুযায়ী বণ্টন করাই organizing । সম্পদ বলতে মানব সম্পদ (human resource) ও অন্যান্য (non-human resource) বুঝানো হয়েছে। Organizing ঠিকমতো না হলে সম্পদের অপচয় হয়। হেনরি ফেয়লের অবদান আধুনিক ব্যবস্থাপনা কিংবা প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার জনক হেনরি ফেয়ল হিসেবে পরিচিত হয়ে আছেন। তিনি তুরষ্কের ইস্তানবুল শহরে জন্মগ্রহণ করেন।পরে তার পরিবারের সাথে ফ্রান্সে পাড়ি জমান। তিনি মূলত একজন খনি প্রকৌশলী ছিলেন। ১৯ বছর বয়সে ১৮৬০ সালে "কম্প্যাগনি ডি কমেন্ট্রি-ফোরচ্যাম্ব্যু-ডিকেজেভিল" কোম্পানিতে কাজ শুরু করেন এবং ১৮৮৮ সালে ব্যবস্থাপনা পরিচালক পদে পদোন্নতি পান। তখন কোম্পানির আর্থিক মন্দাবস্থায় চলছিল। ১৯১৮ সালে যখন তিনি ঐ পদ থেকে অবসর নেন তখন কোম্পানি একটি দৃঢ় অর্থনৈতিক অবস্থানে ছিল। তিনি ব্যবস্থাপনার ৫টি কার্যাবলি এবং ১৪টি মূল নীতি প্রবর্তন করেন।Book: The History of Management Thoughts by Claude S. George Jr হেনরি ফেয়ল ১৯১৬ সালে প্রশাসনিক ব্যবস্থাপনার উপর Industrial and General Management নামক একটি বই লিখেন যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯৪৯ সালে প্রকাশিত হয় এবং যা পরবর্তিতে অন্যান্য লেখকদেরকে ব্যাপকভাবে অনুপ্রাণিত করে।j ফ্রেডারিক টেলর এর অবদান ফ্রেডারিক উইন্সলো টেলর (Frederic Winslow Taylor: 1856 ~ 1915) Scientific Management এর পিতা বলে স্বীকৃত। তিনি U.S.A তে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি Midvale steel company তে একজন শ্রমিক হিসাবে যোগদান করেন এবং ৬ বছরের মধ্যে তার প্রধান প্রকৌশলী হন। ফেভারিট উইন্সলও টেলর কে বৈজ্ঞানিক ব্যবস্তাপনার‌ জনক বলা হয়। ব্যবস্থাপনার উদ্দেশ্য মুখ্য উদ্দেশ্য মুনাফা অর্জন মালিকের কল্যাণ কর্মীদের কল্যাণ অস্তিত্ব রক্ষা গৌণ উদ্দেশ্য উপকরনাদির উন্নয়ন সম্পর্কোন্নয়ন উত্‍পাদনশীলতা বৃদ্ধি নীতিমালা প্রনয়ন উত্‍পাদন মানোন্নয়ন উদ্ভাবন কর্মী পরিচালনা সামাজিক দায়িত্ব পালন বাজার সম্প্রসারণ সুস্থ কার্যপরিবেশ সৃষ্টি তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:ব্যবস্থাপনা বিষয়শ্রেণী:প্রতিষ্ঠান বিষয়শ্রেণী:মূল বিষয়ের নিবন্ধ বিষয়শ্রেণী:ব্যবস্থাপনা পেশা বিষয়শ্রেণী:সংখ্যাগুরু-সংখ্যালঘু সম্পর্ক
মঙ্গলগ্রহ
https://bn.wikipedia.org/wiki/মঙ্গলগ্রহ
পুনর্নির্দেশ মঙ্গল গ্রহ
অধিবিদ্যা
https://bn.wikipedia.org/wiki/অধিবিদ্যা
থাম্ব|মেটাফিজিক্সর পাঠ অধিবিদ্যা বা মেটাফিজিক্স (metaphysics) হল দর্শনের একটি শাখা যাতে বিশ্বের অস্তিত্ব, আমাদের অস্তিত্ব, সত্যের ধারণা, বস্তুর গুণাবলী, সময়, স্থান, সম্ভাবনা ইত্যাদির দার্শনিক আলোচনা করা হয়।Geisler, Norman L. "Baker Encyclopedia of Christian Apologetics" page 446. Baker Books, 1999.Metaphysics (Stanford Encyclopedia of Philosophy). এই ধারার জনক অ্যারিস্টটল। মেটাফিজিক্স শব্দটি গ্রিক ‘মেটা’(μετά) এবং ‘ফিজিকা’(φυσικά) থেকে উদ্ভূত হয়েছে।In the English language, the word comes by way of the Medieval Latin metaphysica, the neuter plural of Medieval Greek metaphysika. Various dictionaries trace its first appearance in English to the mid-sixteenth century, although in some cases as early as 1387. অধিবিদ্যায় দুটি মূল প্রশ্নের উত্তর খোঁজা হয়What is it (that is, whatever it is that there is) like? – সর্বশেষ পরিণাম কি ? কিসের মত ? মেটাফিজিক্স এর একটি মূল শাখা হল. সৃষ্টিতত্ত্ব (cosmology) এবং অন্য একটি শাখা হল- তত্ত্ববিদ্যা (ontology) । তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:দর্শন বিষয়শ্রেণী:দর্শনের শাখা
মেক্সিকো
https://bn.wikipedia.org/wiki/মেক্সিকো
মেক্সিকান যুক্তরাষ্ট্র,The alternative translation Mexican United States is occasionally used. The Federal Constitution of the Mexican United States . (), মেহিকো বা সাধারণ নামে মেক্সিকো () ( ) উত্তর আমেরিকার একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র। এই দেশের উত্তর সীমান্তে অবস্থিত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র; দক্ষিণ ও পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগর; দক্ষিণ-পূর্বে গুয়াতেমালা, বেলিজ ও ক্যারিবিয়ান সাগর এবং পূর্বে মেক্সিকো উপসাগর অবস্থিত।Merriam-Webster's Geographical Dictionary, 3rd ed. Springfield, MA: Merriam-Webster, Inc.; p. 733"Mexico ". The Columbia Encyclopedia, 6th ed. 2001–6. New York: Columbia University Press. প্রায় দুই মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার জুড়ে অবস্থিত মেক্সিকো আয়তনের বিচারে দুই আমেরিকার পঞ্চম বৃহত্তম রাষ্ট্র তথা বিশ্বের চতুর্দশ বৃহত্তম স্বাধীন রাষ্ট্র। দেশের জনসংখ্যা প্রায় ১০৯ মিলিয়ন; জনসংখ্যার বিচারে মেক্সিকো বিশ্বের একাদশ জনবহুল রাষ্ট্র। মেক্সিকো যুক্তরাষ্ট্র একত্রিশটি রাজ্য ও রাজধানী শহর একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় জেলা নিয়ে গঠিত। প্রাককলম্বিয়ান মধ্য আমেরিকায় ইউরোপীয়দের আগমনের পূর্বেই ওলমেক, তোলতেক, তিওতিহুয়াকান, মায়া ও আজটেক সভ্যতার মতো একাধিক উন্নত সভ্যতা বিকাশলাভ করেছিল। ১৫২১ সালে স্পেন নিউ স্পেন প্রতিষ্ঠা করে। এই দেশটিই পরে মেক্সিকো উপনিবেশে পরিণত হয়। ১৮২১ সালে এক স্বাধীনতা যুদ্ধের মাধ্যমে মেক্সিকো স্বাধীনতা অর্জন করে। মেক্সিকোর স্বাধীনতা-উত্তর পর্যায় ছিল অর্থনৈতিক অস্থিরতা, অঞ্চল হস্তচ্যুত হওয়া, গৃহযুদ্ধ এবং বৈদেশিক হস্তক্ষেপ, দুটি সাম্রাজ্য ও দুটি দীর্ঘ অভ্যন্তরীণ একনায়কতন্ত্রের ইতিহাস। সর্বশেষ একনায়কতান্ত্রিক শাসনের শেষে ১৯১০ সালে সংঘটিত হয় মেক্সিকান বিপ্লব। এই বিপ্লবের ফলস্রুতি ১৯১৭ সালের সংবিধান এবং দেশের বর্তমান রাজনৈতিক ব্যবস্থার উত্থান। ২০০০ সালের জুলাই মাসের সাধারণ নির্বাচনে প্রথম বার প্রাতিষ্ঠানিক বিপ্লবী দলের ( পার্তিদ়ো রেভ়োলুসিওনারিও ইন্‌স্তিতুসিওনাল্‌ বা PRI পে, এরে, ই,) হাত থেকে রাষ্ট্রপতির পদ ছিনিয়ে নেয় কোনো বিরোধী দল। একটি আঞ্চলিক শক্তি এবং ১৯৯৪ সাল থেকে অর্গ্যানাইজেশন ফর ইকোনমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি)-এর একমাত্র লাতিন আমেরিকান দেশ মেক্সিকো উচ্চ মধ্য-আয়ের দেশ হিসেবে দৃঢ়ভাবে প্রতিষ্ঠিত। মেক্সিকোকে সদ্য শিল্পায়িত দেশ হিসেবেও অভিহিত করা হয়। জিডিপির বিচারে মেক্সিকো বিশ্বের একাদশ বৃহত্তম অর্থব্যবস্থা। এছাড়াও আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের হিসেবে মাথাপিছু জিডিপির বিচারে লাতিন আমেরিকার বৃহত্তম রাষ্ট্র।International Monetary Fund, Report April 2009 দেশের অর্থব্যবস্থা মেক্সিকোর নর্থ আমেরিকান ফ্রি ট্রেড এগ্রিমেন্ট (নাফটা) সহযোগীদের সঙ্গে ওতোপ্রতোভাবে জড়িত। বর্তমানে মেক্সিকো বিশ্বের এক উত্থানশীল শক্তি হওয়া সত্ত্বেও অসম আয়বণ্টন ও ড্রাগ-সংক্রান্ত হিংসার ঘটনা দেশের অন্যতম প্রধান সমস্যা বলে বিবেচিত হয়। এটি ল্যাটিন আমেরিকার সবচেয়ে উত্তরে ও সবচেয়ে পশ্চিমে অবস্থিত দেশ, এবং পৃথিবীর বৃহত্তম স্পেনীয় ভাষাভাষী রাষ্ট্র। দেশটির সরকারি নাম মেক্সিকান যুক্তরাষ্ট্র (স্পেনীয় ভাষায়: Estados Unidos Mexicanos এস্তাদোস উনিদোস মেহিকানোস)। মেক্সিকোর অধিবাসীরা দেশটিকে অনেক সময়মেক্সিকান প্রজাতন্ত্র (República Mexicana; রেপুব্লিকা মেহিকানা) যদিও এই নামটি সরকারি ভাবে স্বীকৃত নয়। ব্যুৎপত্তি thumb|left|কোডেক্স মেন্ডোজা থেকে মেক্সিকো-টেনোচটিটলান শহরের চিত্র স্পেনের অধীনতাপাশ থেকে মুক্তিলাভ করার পর নিউ স্পেন স্থির করে নতুন রাষ্ট্রের নামকরণ করা হবে রাজধানী মেক্সিকো সিটির নামে। ১৫২৪ সালে প্রাচীন আজটেক রাজধানী তেনোচতিৎলান (Mēxihco-Tenōchtitlan আ-ধ্ব-ব: /tenoːtʃˈtitɬan/, মেশি'কো-তেনোচ্‌তিৎলান্‌) উপর এই শহর স্থাপিত হয়। শহরের নামটি এসেছে নাউয়াত ভাষা থেকে। এই ভাষায় মেশ্ত্‌লি (Mextli) বা মেশি'ৎলি (Mēxihtli) আজটেকদের রক্ষাকর্তা ও যুদ্ধদেবতা উইৎসিলোপোচ্‌ৎলির (Huitzilopōchtli, আ-ধ্ব-ব /witsiloˈpoːtʃtɬi/) গোপন নাম। এক্ষেত্রে মেশি'কো (Mēxihco) শব্দের অর্থ "মেশ্ত্‌লি যেখানে বাস করেন"। অন্য এক মতে মেশি'কো শব্দটি এসেছে মেৎস্ত্‌লি (mētztli, চাঁদ) শিক্ত্‌লি (xictli নাভি, কেন্দ্র, বা পুত্র) এবং স্থানবাচক অনুসর্গ -কো (-co) যুক্ত হয়ে। এই ক্ষেত্রে নামের অর্থ "চাঁদের কেন্দ্রের স্থান" বা "চাঁদ হ্রদের কেন্দ্রের স্থান"। এই নামটি তেশকোকো হ্রদটিকে (Texcoco তেশ্‌কোকো) নির্দেশ করছে। যে পরস্পর সংযুক্ত হ্রদব্যবস্থার কেন্দ্রে তেশকোকো হ্রদটি অবস্থিত, সেটি কতকটা খরগোসের আকার বিশিষ্ট। ঠিক একই রকম একটি ছবি আজটেকরা চাঁদের গায়ে দেখতে পেত। তেনোচতিৎলান অবস্থিত ছিল সেই হ্রদের (বা চাঁদ/খরগোস) কেন্দ্রে বা নাভিস্থলে। আবার অন্য একটি মতে শব্দটি মাগেই (স্পেনীয় ও ইংরেজি: maguey) গাছের দেবী মেক্ত্‌লি-র (Mēctli) নাম থেকে উদ্ভূত হয়েছে। ইতিহাস আমেরিকানদের অন্যতম লাভজনক সংঘাত হলো মেক্সিকো যুদ্ধ। ১৮৪৬ থেকে ১৮৪৮ সালের মধ্যে সংঘটিত মেক্সিকো-আমেরিকা যুদ্ধটি হলো বিদেশের মাটিতে আমেরিকার প্রথম যুদ্ধ। এই যুদ্ধটি ছিল রাজনৈতিকভাবে বিভক্ত এবং অপ্রস্তুত মেক্সিকোর বিরুদ্ধে আমেরিকার তৎকালীন প্রেসিডেন্ট জেমস কে পোলকের চাপিয়ে দেওয়া একটি যুদ্ধ। এর উদ্দেশ্য ছিল আমেরিকার সীমানাকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত করা। তৎকালীন আমেরিকা এবং মেক্সিকোর মধ্যবর্তী রিও গ্র্যান্ডে যুদ্ধ শুরু হয় এবং যুদ্ধে একে একে আমেরিকা জিততে থাকে। চূড়ান্তভাবে জয়ী হওয়ার পর মেক্সিকোর ভূখণ্ডের ৩ ভাগের ১ ভাগ ভূখণ্ড আমেরিকার দখলে চলে আসে। দুই বছরের যুদ্ধে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ২ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয় করে। দ্বন্দ্বের কেন্দ্র ছিল টেক্সাস, যা মাত্র এক দশক আগে মেক্সিকোর কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করেছিল। যুদ্ধটি গুয়াদালাপে-হিডালগো চুক্তির আওতায় ১৮৪৮ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শেষ হয়েছিল। আজকের আমেরিকার ক্যালিফোর্নিয়া, উটাহ, নেভাডা, এরিজোনা এবং নিউ মেক্সিকোর মতো সমৃদ্ধ প্রদেশগুলো একসময়কার মেক্সিকোর অংশ ছিল। ২ দশমিক ৭২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের তুলনায় যা অনেক বেশি। মেক্সিকো যুদ্ধে ১৩ হাজার ২৮৩ মার্কিন সেনা নিহত হয়। রাজনীতি থাম্ব|১৮১৯ সালে অ্যাডামস-অনস চুক্তি স্বাক্ষরের পর নিউ স্পেনের ভাইসরয়ালিটি মেক্সিকোতে একটি ফেডারেল বা যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রজাতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। রাষ্ট্রপতি একাধারে রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকার প্রধান। আইনসভা দ্বিকাক্ষিক। নিম্নকক্ষের নাম ফেডারেল চেম্বার অভ ডেপুটিজ, যার সদস্যসংখ্যা ৫০০। উচ্চকক্ষের নাম সেনেট, যার সদস্যসংখ্যা ১২৮। ভোটাধিকারের বয়স ১৮। বর্তমান সংবিধান ১৯১৭ সালের ৫ই ফেব্রুয়ারি প্রণয়ন করা হয়। সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়। মেক্সিকোর সরকারব্যবস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতোই তিনটি শাখায় বিভক্ত – নির্বাহী, আইন প্রণয়নকারী এবং বিচার। কিন্তু মেক্সিকোতে নির্বাহী শাখাটি অপর দুইটি শাখার উপর অনেক বেশি আধিপত্য বিস্তার করে। ফলে মেক্সিকোর রাষ্ট্রপতি দেশের রাজনৈতিক ব্যবস্থা অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করেন। বিংশ শতাব্দীর অধিকাংশ সময় ধরে একটি মাত্র রাজনৈতিক দল ইন্সটিটিউশনাল রেভোলিউশনারি পার্টি ক্ষমতা দখল করে রেখেছিল। ২০০০ সালে এসে প্রথমবারের মত এর প্রার্থী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে পরাজিত হয়। সেইবার ন্যাশনাল অ্যাকশন পার্টির বিসেন্তে ফক্স জয়লাভ করেন। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ পাদটীকা গ্রন্থপঞ্জি বহিঃসংযোগ Mexico Travel Guide The Presidency of Mexico Official site of the Government of Mexico Chief of State and Cabinet Members Tourism Board official website Mexico from UCB Libraries GovPubs Mexico on OneWorld Country Guides বিষয়শ্রেণী:মেক্সিকো বিষয়শ্রেণী:জি১৫ রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:উত্তর আমেরিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ই৭ রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:জি২০ সদস্য বিষয়শ্রেণী:স্পেনীয় ভাষী রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৮১০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল
অর্থ (টাকা)
https://bn.wikipedia.org/wiki/অর্থ_(টাকা)
ডান|থাম্ব| কাল্পনিক এটিএম কার্ডের একটি নমুনা ছবি। বিশ্বের অর্থের বৃহত্তম অংশটি কেবল অ্যাকাউন্টিং নম্বর হিসাবে বিদ্যমান যা আর্থিক কম্পিউটারগুলির মধ্যে স্থানান্তরিত হয়। বিভিন্ন প্লাস্টিক কার্ড এবং অন্যান্য ডিভাইস পৃথক গ্রাহকদেরকে মুদ্রার ব্যবহার ছাড়াই বৈদ্যুতিনভাবে তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে এবং এই জাতীয় অর্থ স্থানান্তর করার ক্ষমতা দেয়। থাম্ব|174x174পিক্সেল| ১৭৮৬ সালে জেমস গিলের ব্যঙ্গচিত্র, রাজা তৃতীয় জর্জের হাতে দেওয়া প্রচুর অর্থ ব্যাগগুলি ভিক্ষুকের সাথে বদল হয়, যার পা এবং বাহু 2000কেটে ফেলা হয়েছিল, বাম কোণে সাধারণভাবে, অর্থ হলো কোনো পণ্য ক্রয়-বিক্রয় বা সেবা গ্রহণ বা ঋণ গ্রহণ ও পরিশোধের উপাদান। অর্থ প্রধানত বিনিময়ের মাধ্যম, আয়-ব্যয়ের একক, মজুত দ্রব্যর মূল্য এবং বিভিন্ন সেবার পরিশোধের মান হিসেবে কাজ করে। যে কোনো উপাদান বা যাচাইযোগ্য স্মারক এ কাজগুলো করে থাকলে তা অর্থ হিসেবে বিবেচিত হবে। ব্যুৎপত্তি ক্যাপিটোলাইন পাহাড়ের জুনো মন্দির থেকে অর্থ শব্দটির উৎপত্তি হয়েছে। এই পাহাড়টি রোমের সাত পাহাড়ের অন্যতম একটি পাহাড়। প্রাচীনকালে জুনো প্রায়ই অর্থের সাথে সংযুক্ত হতো। প্রাচীন রোমের টাকশালে রোমের জুনো মনেটার মন্দির অবস্থিত ছিল । পশ্চিমা বিশ্বে কয়েন অর্থের নাম ছিল ধাতব মুদ্রা (স্পেসি) । ল্যাটিন শব্দ স্পেসি থেকে এ নামটি নেওয়া হয়। ইতিহাস বাম|থাম্ব| লিডিয়া থেকে একটি ৬৪০ খ্রিষ্ট পূর্বের এক তৃতীয়াংশ স্ট্যাটার ইলেক্ট্রাম মুদ্রা। এক লাখ বছর আগে পৃথিবীতে পণ্য বিনিময় পদ্ধতি চালু ছিল। সমাজে এবং অর্থনীতিতে এর কোনো নির্ভরশীল প্রমাণ নেই। অ-আর্থিক সমাজ পরিচালিত হতো প্রধানতো উপহার অর্থ এবং ঋণের দ্বারা। অপরিচিতদের অথবা ক্ষমতাবান শত্রুদের মধ্যে পণ্য বিনিময় প্রথা ঘটতো । পরে পৃথিবীর অনেক দেশই অর্থের ব্যবহার শুরু করে। তিন হাজার বছর খ্রিষ্ট পূর্বে মেসোপটেমিয়ায় ওজনের একক ছিল মেসোপটেমিয়ান শেকেল। এটি নির্ভরশীল ছিল কোনো কিছুর ভর যেমন ১৬০ বার্লির শস্যদানার উপর। আমেরিকা, এশিয়া, আফ্রিকা এবং অস্ট্রেলিয়ার সমাজে প্রায়ই ব্যবহৃত হতো শেল অর্থ, কড়ির শেল। হেরোডেটাসের মতানুসারে, লিডিয়ানসরা স্বর্ণ এবং সিলভার কয়েনের ব্যবহার করে। আধুনিক পণ্ডিতদের মতে, ৬৫০-৬০০ খ্রিষ্ট পূর্বে আবিষ্কৃত হয় প্রথম স্ট্যাম্প কয়েন। থাম্ব| সংগীত রাজবংশ জিয়াজি, বিশ্বের প্রথমতম কাগজের অর্থ সং ড্যাইন্যাস্টির (সংগীত রাজবংশ) সময়ে চীনে প্রথম টাকা অথবা ব্যাংক নোট ব্যবহৃত হয়। ব্যাংক নোট ‘জিয়াজি’ নামে পরিচিত ছিল। সপ্তম শতাব্দী হতে এর প্রচলন শুরু হয়। তারা পণ অর্থ উৎপাটন করেনি। তারা অর্থের সাথে কয়েন ব্যবহার করতো। ভ্রমণকারী মারকো পোলো এবং উইলিয়াম অব রাবরাকের হিসাবের মাধ্যমে ইউরোপে কাগজের মুদ্রা পরিচিতি পায়। স্টকহোলমস্ ব্যানকো ১৬৬১ সালে ইউরোপে প্রথম ব্যাংক নোট ইস্যু করে। সেখানে একই সাথে কয়েনের ব্যবহারও ছিল। সোনার মানে, আর্থিক ব্যবস্থায় বিনিময়ের মাধ্যম ছিল ব্যাংক নোট, সতের-আঠারো শতাব্দীতে ইউরোপে মুদ্রার মতো যা পরিবর্তন যোগ্য ছিল প্রি-সেটে, সোনার নির্ধারিত পরিমাণে, সোনার কয়েনে প্রতিস্থাপিত হতো। এই সোনার মান নোট তৈরি করেছিল বৈধ মূল্যবেদন পত্র এবং সোনার কয়েনে পুনঃপ্রাপ্তি ছিল নিরুৎসাহিত। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে বিশ্বের প্রায় সব দেশ সোনার মান গ্রহণ করে। নির্ধারিত পরিমাণ সোনার সাথে তারা তাদের বৈধ মূল্যবেদন পত্র নোট সমর্থন করে । দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধ এবং ব্রেটন উডস সম্মেলনের পরে অধিকাংশ দেশ প্রচলন করে ক্ষমতাপ্রদান (ফিয়াট) মুদ্রা। যা নির্ধারিত ছিল আমেরিকান ডলারে। আমেরিকান ডলার পরিবর্তিত হতো নির্ধারিত সোনায়। ১৯৭১ সালে আমেরিকান সরকার বাতিল করে আমেরিকান ডলারের সোনায় পরিবর্তন হওয়া। এর ফলে অনেক দেশ তাদের মুদ্রা আমেরিকান ডলারে স্থির রাখে। এ ছাড়া অধিকাংশ দেশের মুদ্রা সরকারের ক্ষমতাপ্রদান মুল্যবেদন পত্র এবং অর্থ পরিশোধের মাধ্যমে পণ্য পরিবর্তনের মাধ্যম ব্যতীত যেকোনো কিছু দ্বারা অনবলম্বন হয়। আধুনিক অর্থ তত্ত্ব মতে, কর (ট্যাক্স) এর মাধ্যমে ক্ষমতাপ্রদান অর্থ উৎসাহিত হয় ।কর (ট্যাক্স) আরোপের মাধ্যমে রাষ্ট্র সৃষ্টি করে ইস্যুকৃত মুদ্রার চাহিদা। বিষয়শ্রেণী:অর্থনৈতিক নৃবিজ্ঞান বিষয়শ্রেণী:মুদ্রা বিষয়শ্রেণী:অর্থ (সম্পদ) বিষয়শ্রেণী:মূল বিষয়ের নিবন্ধ বিষয়শ্রেণী:মুদ্রা অর্থশাস্ত্র বিষয়শ্রেণী:বাণিজ্য (ক্রয়বিক্রয়)
পর্বত
https://bn.wikipedia.org/wiki/পর্বত
থাম্ব|মাউন্ট এভারেস্ট, পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত পর্বত হল পৃথিবীর ভূত্বকের একটি উঁচু অংশ, সাধারণত এর খাড়া দিকগুলিতে উন্মুক্ত নিরেট প্রস্তর দেখায়। যদিও এর বর্ণনা পরিবর্তিত হয়, একটি পর্বত একটি মালভূমি থেকে এদের চূড়ার উচ্চতার জন্য পার্থক্য করা যেতে পারে এবং সাধারণত একটি পাহাড়ের চেয়ে উঁচু হয়, সাধারণত আশেপাশের জমি থেকে কমপক্ষে ৩০০ মিটার (১,০০০ ফুট) উপরে উঠে। কয়েকটি পর্বত বিচ্ছিন্ন চূড়া, তবে বেশিরভাগ পর্বতশ্রেণীতে দেখা যায়। পর্বতগুলি টেকটোনিক শক্তি, ক্ষয় বা আগ্নেয়গিরির মাধ্যমে গঠিত হয়, যেখানে কয়েক মিলিয়ন বছর পর্যন্ত সময়ের স্কেলে কাজ করে। একবার পর্বত নির্মাণ বন্ধ হয়ে গেলে, স্লাম্পিং এবং অন্যান্য ধরনের ব্যাপক অপচয়ের, সেইসাথে নদী এবং হিমবাহের ক্ষয়ের দ্বারা, আবহাওয়ার ক্রিয়াকলাপের মাধ্যমে পর্বত ধীরে ধীরে সমতল হয়। একই অক্ষাংশে সমুদ্রপৃষ্ঠের তুলনায় ঠান্ডা জলবায়ু তৈরি করে পাহাড়ের উচ্চ উচ্চতা। এই ঠান্ডা জলবায়ু পাহাড়ের বাস্তুন্ত্রের উপর ব্যাপক প্রভাব ফেলে। বিভিন্ন উচ্চতায় বিভিন্ন গাছপালা এবং প্রাণী রয়েছে। কম অতিথিপরায়ণ ভূখণ্ড এবং জলবায়ুর কারণে, পর্বতমালা কৃষি কাজের জন্য কম এবং সম্পদ আহরণের জন্য বেশি ব্যবহার করা হয়, যেমন খনিজ আহরণ এবং বড় গাছের লগ কাটা, চিত্তবিনোদনের, যেমন পর্বত আরোহণ এবং বরফের উপর পিছলানো খেলার জন্য। পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত হল এশিয়ার এভারেস্ট পর্বত হিমালয় পর্বতমালা , যার চূড়ার গড় উচ্চতা সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উপরে। সৌরজগতের যেকোনো গ্রহের সর্বোচ্চ পরিচিত পর্বত হল মঙ্গল গ্রহে অলিম্পাস মনস যার চূড়ার উচ্চতা । থাম্ব|তানজানিয়ার মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো, আফ্রিকার সর্বোচ্চ পর্বত সংজ্ঞা থাম্ব|মাউন্ট এলব্রাস, ইউরোপের সর্বোচ্চ পর্বত থাম্ব|ইন্দোনেশিয়ার পুনকাক জায়া, ওশেনিয়ার সর্বোচ্চ পর্বত পাহাড়ের কোন সর্বজনস্বীকৃত সংজ্ঞা নেই। উচ্চতা, আয়তন, ত্রাণ, খাড়াতা, ব্যবধান এবং ধারাবাহিকতা একটি পর্বতকে সংজ্ঞায়িত করার মানদণ্ড হিসাবে ব্যবহৃত হয়েছে। অক্সফোর্ড ইংলিশ ডিকশনারিতে একটি পর্বতকে "পৃথিবী পৃষ্ঠের একটি প্রাকৃতিক উচ্চতা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে যা আশেপাশের স্তর থেকে কমবেশি আকস্মিকভাবে বৃদ্ধি পায় এবং একটি উচ্চতা অর্জন করে যা তুলনামূলকভাবে সন্নিহিত উচ্চতার সাথে চিত্তাকর্ষক বা উল্লেখযোগ্য।" ভূমিরূপকে পর্বত বলা হবে কিনা তা স্থানীয় ব্যবহারের উপর নির্ভর করে। জন হুইটোর ডিকশনারী অফ ফিজিক্যাল জিওগ্রাফি বলে "কিছু কর্তৃপক্ষ উপরে উচ্চতা বিশিষ্টদের পর্বত হিসাবে বিবেচনা করে , এ উচ্চতার নীচে যেগুলিকে পাহাড় হিসাবে উল্লেখ করা হয়।" যুক্তরাজ্য এবং আয়ারল্যান্ড প্রজাতন্ত্রে, একটি পর্বতকে সাধারণত কমপক্ষে উচ্চতা চূড়া হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়,- যুক্তরাজ্য সরকারের সরকারী সংজ্ঞার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে একটি পর্বত, প্রবেশের উদ্দেশ্যে, একটি চূড়া বা উচ্চতর। এছাড়াও, কিছু সংজ্ঞায় একটি ভূ-সংস্থান প্রাধান্যের প্রয়োজনীয়তাও রয়েছে, যেমন পর্বতটি উপরে উঠে পার্শ্ববর্তী ভূখণ্ডের উপরে। এক সময় ইউএস বোর্ড অন জিওগ্রাফিক নেমস একটি পর্বতকে লম্বা হিসাবে সংজ্ঞায়িত করেছিল , কিন্তু ১৯৭০ সাল থেকে এ সংজ্ঞা পরিত্যাগ করেছে। এই উচ্চতার চেয়ে কম যেকোন অনুরূপ ভূমিরূপ একটি পাহাড় হিসাবে বিবেচিত হত। যাইহোক, আজ, মার্কিন ভূতাত্ত্বিক জরিপ উপসংহারে পৌঁছেছে যে এই পদগুলির মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রযুক্তিগত সংজ্ঞা নেই। ইউএন এনভায়রনমেন্টাল প্রোগ্রামের "পার্বত্য পরিবেশ" এর সংজ্ঞা নিম্নলিখিত যে কোনো একটি অন্তর্ভুক্ত করে: শ্রেণি ১: এর বেশি উচ্চতা । শ্রেণি ২: এর মধ্যে উচ্চতা এবং । শ্রেণি ৩: এর মধ্যে উচ্চতা এবং । শ্রেণি ৪: এর মধ্যে উচ্চতা এবং , ২ ডিগ্রির বেশি ঢাল সহ। শ্রেণি ৫: এর মধ্যে উচ্চতা এবং , ৫ ডিগ্রী এবং/অথবা এর বেশি ঢাল সহ উচ্চতা সীমা এর মধ্যে । শ্রেণি ৬: এর মধ্যে উচ্চতা এবং , একটি সহ উচ্চতা সীমা এর মধ্যে । শ্রেণি ৭: বিচ্ছিন্ন অভ্যন্তরীণ অববাহিকা এবং মালভূমি এর কম এমন এলাকায় যা সম্পূর্ণভাবে শ্রেণি ১ থেকে ৬ পর্বত দ্বারা বেষ্টিত, কিন্তু নিজেরাই শ্রেণি ১ থেকে ৬ পর্বতমালার মানদণ্ড পূরণ করে না। এই সংজ্ঞাগুলি ব্যবহার করে, পর্বতগুলি ইউরেশিয়ার ৩৩%, দক্ষিণ আমেরিকার ১৯%, উত্তর আমেরিকার ২৪% এবং আফ্রিকার ১৪% জুড়ে রয়েছে। সামগ্রিকভাবে, পৃথিবীর ভূমি ভরের ২৪% পাহাড়ী। প্রকারভেদ ভঙ্গিল পর্বত (fold mountains) হিমালয় পর্বতমালা আল্পস পর্বতমালা আন্দিজ পর্বতমালা কানাডীয় রকি পর্বতমালা স্তূপ পর্বত (block-fault mountains) বিন্ধ্য পর্বত কলোরাডোর রকি পর্বতমালা সঞ্চয়জাত পর্বত বা আগ্নেয়গিরি (Volcano) গম্বুজ পর্বত (domal upliftment) পশ্চিমঘাট পর্বতমালা ক্ষয়জাত পর্বত (residual mountain) আরাবল্লী পর্বত আপালেচিয়ান পর্বতমালা ইউরাল পর্বতমালা ভূতত্ত্ব তিনটি প্রধান ধরনের পর্বত রয়েছে: আগ্নেয়গিরি, ভাঁজ এবং ব্লক। তিনটি প্রকারই প্লেট টেকটোনিক্স থেকে গঠিত হয়: যখন পৃথিবীর ভূত্বকের কিছু অংশ সরে যায়, চূর্ণবিচূর্ণ হয় এবং ডুব দেয়। কম্প্রেশনাল ফোর্স, আইসোস্ট্যাটিক উত্থান এবং আগ্নেয় পদার্থের অনুপ্রবেশ পৃষ্ঠের শিলাকে ঊর্ধ্বমুখী করে, যা আশেপাশের বৈশিষ্ট্যগুলির চেয়ে উচ্চতর ভূমিরূপ তৈরি করে। বৈশিষ্ট্যটির উচ্চতা এটিকে হয় একটি পাহাড় বা, যদি উঁচু এবং খাড়া হয়, একটি পর্বত করে তোলে। প্রধান পর্বতগুলি দীর্ঘ রৈখিক চাপে ঘটতে থাকে, যা টেকটোনিক প্লেটের সীমানা এবং কার্যকলাপ নির্দেশ করে। আগ্নেয়গিরি থাম্ব|ফুজি আগ্নেয়গিরি আগ্নেয়গিরি তৈরি হয় যখন একটি প্লেট অন্য প্লেটের নিচে, অথবা মধ্য-সমুদ্রের রিজ বা হটস্পটে। এবং ম্যাগমা গঠন করে যা পৃষ্ঠে পৌঁছায়। যখন ম্যাগমা পৃষ্ঠে পৌঁছায়, এটি প্রায়শই একটি আগ্নেয়গিরির পর্বত তৈরি করে, যেমন একটি ঢাল আগ্নেয়গিরি বা স্ট্রাটোভোলকানো। আগ্নেয়গিরির উদাহরণগুলির মধ্যে রয়েছে জাপানের মাউন্ট ফুজি এবং ফিলিপাইনের মাউন্ট পিনাটুবো। একটি পর্বত তৈরি করার জন্য ম্যাগমাকে পৃষ্ঠে পৌঁছাতে হবে না: মাটির নীচে শক্ত হওয়া ম্যাগমা এখনও গম্বুজ পর্বত গঠন করতে পারে, যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নাভাজো পর্বত। ভাঁজ পাহাড় থাম্ব|খোঁচা দেওয়া ভাঁজে গড়ে ওঠা পাহাড়ের চিত্র ভাঁজ পর্বতগুলি ঘটে যখন দুটি প্লেটের সংঘর্ষ হয়: থ্রাস্ট ফল্ট বরাবর সংক্ষিপ্তকরণ ঘটে এবং ভূত্বকটি অতিরিক্ত ঘন হয়ে যায়৷ যেহেতু কম ঘন মহাদেশীয় ভূত্বক নীচের ঘন ম্যান্টেল শিলাগুলিতে "ভাসতে থাকে", তাই কোনো ভূত্বকের ওজন পাহাড়, মালভূমি বা পর্বত গঠন করতে বাধ্য হয়। ম্যান্টলের মধ্যে নিচের দিকে জোর করে অনেক বেশি আয়তনের উচ্ছ্বাস বল দ্বারা ভারসাম্যপূর্ণ হতে হবে। এইভাবে মহাদেশীয় ভূত্বক সাধারণত পাহাড়ের নীচে অনেক বেশি ঘন হয়, নীচের অংশের তুলনায়। আপফোল্ডগুলি অ্যান্টিলাইন এবং ডাউনফোল্ডগুলি সিঙ্কলাইন: অসমমিত ভাঁজগুলিতে স্থগিত এবং উল্টানো ভাঁজও থাকতে পারে। বলকান পর্বতমালা এবং জুরা পর্বত ভাঁজ মউন্টাইন্সের উদাহরণ। ব্লক পাহাড় alt=the highest summit of Pirin|থাম্ব|পিরিন মাউন্টেন, বুলগেরিয়া, ফল্ট-ব্লক রিলার অংশ - রোডোপ ম্যাসিফ ব্লক পর্বত ভূত্বকের ত্রুটির কারণে সৃষ্ট হয়: একটি সমতল যেখানে শিলা একে অপরের উপর দিয়ে চলে গেছে। যখন একটি চ্যুতির একপাশের শিলাগুলি অন্য দিকে আপেক্ষিকভাবে বৃদ্ধি পায়, তখন এটি একটি পর্বত গঠন করতে পারে। উদ্বর্তিত ব্লকগুলি হল ব্লক পর্বত বা হরস্ট । মধ্যবর্তী ড্রপ ব্লকগুলিকে গ্র্যাবেন বলা হয়: এগুলি ছোট হতে পারে বা বিস্তৃত রিফ্ট ভ্যালি সিস্টেম তৈরি করতে পারে। প্রাকৃতিক দৃশ্যের এই রূপটি পূর্ব আফ্রিকা, ভসজেস এবং রাইন উপত্যকা, এবং পশ্চিম উত্তর আমেরিকার অববাহিকা ও রেঞ্জ প্রদেশে দেখা যায়। এই অঞ্চলগুলি প্রায়ই ঘটে যখন আঞ্চলিক চাপ বর্ধিত হয় এবং ভূত্বক পাতলা হয়। ক্ষয় থাম্ব|আপস্টেট নিউইয়র্কের ক্যাটস্কিলগুলি একটি ক্ষয়প্রাপ্ত মালভূমির প্রতিনিধিত্ব করে। উত্থান পরবর্তী সময়, পর্বতগুলি ক্ষয়ের এজেন্ট (জল, বাতাস, বরফ এবং মাধ্যাকর্ষণ) এর শিকার হয় যা ধীরে ধীরে উত্থিত এলাকাকে নিচের দিকে ধারণ করে। ক্ষয়ের কারণে পাহাড়ের উপরিভাগ সেই পাথরের চেয়ে ছোট হয় যা পাহাড় নিজেই তৈরি করে। হিমবাহী প্রক্রিয়াগুলি বৈশিষ্ট্যযুক্ত ভূমিরূপ তৈরি করে, যেমন পিরামিডাল চূড়া, ছুরি-প্রান্ত আরেটিস এবং বাটি-আকৃতির বৃত্ত যা হ্রদ ধারণ করতে পারে। মালভূমি পর্বত, যেমন ক্যাটসকিলস, একটি উন্নীত মালভূমির ক্ষয় থেকে গঠিত হয়। জলবায়ু থাম্ব|উচ্চ অক্ষাংশ উচ্চতায় উত্তরাঞ্চলীয় ইউরালগুলির একটি এবং আলপাইন জলবায়ু ও অনুর্বর ভূমি রয়েছে। বিকিরণ এবং পরিচলনের মধ্যে মিথস্ক্রিয়ার কারণে পাহাড়ের জলবায়ু উচ্চ উচ্চতায় ঠান্ডা হয়ে যায়। দৃশ্যমান বর্ণালীতে সূর্যের আলো মাটিতে আঘাত করে এবং এটিকে উত্তপ্ত করে। মাটি তখন পৃষ্ঠের বায়ুকে উত্তপ্ত করে। যদি বিকিরণই মাটি থেকে মহাকাশে তাপ স্থানান্তর করার একমাত্র উপায় হয়, তবে বায়ুমণ্ডলে গ্যাসের গ্রিনহাউস প্রভাব ভূমিকে প্রায় ৩৩৩ কে (৬০ °সে; ১৪০ °ফা) এ রাখত।, এবং তাপমাত্রা উচ্চতার সাথে দ্রুত ক্ষয় হবে। যাইহোক, যখন বাতাস গরম হয়, তখন এটি প্রসারিত হতে থাকে, যা এর ঘনত্ব কমিয়ে দেয়। এইভাবে, গরম বাতাস বৃদ্ধি পায় এবং তাপকে উপরের দিকে স্থানান্তর করে। এটি পরিচলনের প্রক্রিয়া। পরিচলন ভারসাম্য আসে যখন একটি নির্দিষ্ট উচ্চতায় বায়ুর একটি অংশ এর চারপাশের ঘনত্বের সমান থাকে। বায়ু তাপের একটি দুর্বল পরিবাহী, তাই বায়ুর একটি অংশ তাপ বিনিময় ছাড়াই উঠবে এবং পড়ে যাবে। এটি একটি রুদ্ধতাপীয় প্রক্রিয়া হিসাবে পরিচিত, যার একটি বৈশিষ্ট্যগত চাপ-তাপমাত্রা নির্ভরতা রয়েছে। চাপ কমার সাথে সাথে তাপমাত্রা কমতে থাকে। উচ্চতার সাথে তাপমাত্রা হ্রাসের হারকে রুদ্ধতাপীয় ভ্রষ্টতার হার বলা হয়, যা প্রায় ৯.৮°সে প্রতি কিলোমিটার (বা ৫.৪ °ফা (৩.০ °সে) প্রতি ১০০০ ফুট) উচ্চতায়। বায়ুমণ্ডলে পানির উপস্থিতি পরিচলন প্রক্রিয়াকে জটিল করে তোলে। জলীয় বাষ্পে বাষ্পীভবনের সুপ্ত তাপ থাকে। বায়ু বেড়ে ওঠার সাথে সাথে শীতল হয়, এটি পরিপূর্ণ হয়ে যায় এবং জলীয় বাষ্পের পরিমাণ ধরে রাখতে পারে না। জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয় ( মেঘ তৈরি করে), এবং তাপ নির্গত করে, যা শুষ্ক রুদ্ধতাপীয় ভ্রষ্টতার হার থেকে আর্দ্র রুদ্ধতাপীয় ভ্রষ্টতার হার এ পরিবর্তিত হয় (৫.৫°সে প্রতি কিলোমিটার বা ৩°ফা (১.৭ °সে) প্রতি ১০০০ফুট) প্রকৃত বিলোপের হার উচ্চতা এবং অবস্থান অনুসারে পরিবর্তিত হতে পারে। অতএব, উপরে চলন্ত একটি পর্বতে মোটামুটিভাবে ৮০ সরানোর সমান কিলোমিটার (৪৫ মাইল বা ০.৭৫° অক্ষাংশ ) নিকটতম মেরুতে। এই সম্পর্কটি শুধুমাত্র আনুমানিক, যদিও, স্থানীয় কারণগুলি যেমন মহাসাগরের নৈকট্য (যেমন আর্কটিক মহাসাগর) জলবায়ুকে ব্যাপকভাবে পরিবর্তন করতে পারে। উচ্চতা বৃদ্ধির সাথে সাথে বৃষ্টিপাতের প্রধান রূপ তুষার হয়ে যায় এবং বাতাস বৃদ্ধি পায়। একটি উচ্চতায় বাস্তুসংস্থানের উপর জলবায়ুর প্রভাব মূলত বৃষ্টিপাতের পরিমাণ এবং জৈব তাপমাত্রার সংমিশ্রণের মাধ্যম, যেমনটি লেসলি হোল্ড্রিজ ১৯৪৭ সালে বর্ণনা করেছিলেন। জৈব তাপমাত্রা হল গড় তাপমাত্রা; সমস্ত তাপমাত্রা এর নিচে ০°সে. হিসাবে বিবেচিত হয় যখন তাপমাত্রা ০°সে এর নিচে থাকে, গাছপালা সুপ্ত, তাই সঠিক তাপমাত্রা গুরুত্বহীন। স্থায়ী তুষার সহ পর্বতশৃঙ্গের জৈব তাপমাত্রা এর নিচে থাকতে পারে । জলবায়ু পরিবর্তন পাহাড়ের পরিবেশগুলি নৃতাত্ত্বিক জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য বিশেষভাবে সংবেদনশীল এবং বর্তমানে গত ১০,০০০ বছরে অভূতপূর্ব পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। সাম্প্রতিক দশকগুলিতে বরফের টুপি পর্বত এবং হিমবাহগুলি ত্বরান্বিত বরফের ক্ষতির অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে। হিমবাহ, ভূগর্ভস্থ চিরহিমায়িত অঞ্চল এবং তুষার গলে যাওয়ার ফলে অন্তর্নিহিত পৃষ্ঠগুলি ক্রমশ ভারসাম্যহীন হয়ে উঠেছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ল্যান্ডস্লিপ বিপদসংখ্যা এবং মাত্রা উভয় ক্ষেত্রেই বৃদ্ধি পেয়েছে। আলপাইন বাস্তুতন্ত্র বিশেষভাবে জলবায়ুগতভাবে সংবেদনশীল হতে পারে। অনেক মধ্য-অক্ষাংশ পর্বত শীতল জলবায়ুর আশ্রয়স্থল হিসাবে কাজ করে, যেখানে বাস্তুতন্ত্রগুলি ছোট পরিবেশগত কুলুঙ্গিগুলি দখল করে। পাশাপাশি জলবায়ুর পরিবর্তন একটি বাস্তুতন্ত্রের উপর যে প্রত্যক্ষ প্রভাব ফেলতে পারে, স্থিতিশীলতা এবং মাটির বিকাশের পরিবর্তনের ফলে মাটিতেও পরোক্ষ প্রভাব রয়েছে। জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে নদীর নিষ্কাশনের ধরণগুলিও উল্লেখযোগ্যভাবে প্রভাবিত হয়, যার ফলশ্রুতিতে আল্পাইন উৎস থেকে খাবার জলের উপর নির্ভরশীল সম্প্রদায়ের উপর উল্লেখযোগ্য প্রভাব পড়ে। প্রায় অর্ধেক পার্বত্য অঞ্চল প্রধানত শহুরে জনসংখ্যার জন্য প্রয়োজনীয় বা সহায়ক জলের সংস্থান করে, বিশেষ করে শুষ্ক মৌসুমে এবং মধ্য এশিয়ার মতো আধা-শুষ্ক অঞ্চলে। বাস্তুবিদ্যা থাম্ব|সুইস আল্পসে একটি আলপাইন পাঁক পাহাড়ের শীতল আবহাওয়া পাহাড়ে বসবাসকারী উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের প্রভাবিত করে। উদ্ভিদ এবং প্রাণীদের একটি নির্দিষ্ট দল জলবায়ুর তুলনামূলকভাবে সংকীর্ণ পরিসরে অভিযোজিত হতে থাকে। এইভাবে, বাস্তুবিদ্যা মোটামুটি ধ্রুবক জলবায়ুর উচ্চতা ব্যান্ডের সাথে থাকে। একে বলা হয় উচ্চতাগত অঞ্চল। এই অঞ্চলের শুষ্ক জলবায়ু সহ , পর্বতগুলির উচ্চ বৃষ্টিপাতের প্রবণতা এবং নিম্ন তাপমাত্রাও বিভিন্ন অবস্থার জন্য সরবরাহ করে, যা জোনেশন বাড়ায়। কিছু উদ্ভিদ এবং প্রাণী উচ্চতাযুক্ত অঞ্চলে পাওয়া যায় কারণ তারা বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় কারণ একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলের উপরে এবং নীচের অবস্থাগুলি আতিথ্যের অযোগ্য হবে এবং এইভাবে তাদের চলাচল বা বিচ্ছুরণকে সীমাবদ্ধ করে। এই বিচ্ছিন্ন পরিবেশগত ব্যবস্থাগুলি আকাশ দ্বীপ নামে পরিচিত। উচ্চতাবিশিষ্ট অঞ্চলগুলি একটি সাধারণ ধাচ অনুসরণ করে। টুন্ড্রার মতো, সর্বোচ্চ উচ্চতায়, গাছ বাড়তে পারে না, এবং যা কিছু জীবন উপস্থিত থাকতে পারে তা আলপাইন ধরনের হবে,। গাছের রেখার ঠিক নীচে, কেউ নিডল পাতাযুক্ত গাছের সাবলপাইন বন খুঁজে পেতে পারে, যা ঠান্ডা, শুষ্ক অবস্থা সহ্য করতে পারে। তার নীচে পাহাড়ী বন জন্মে। পৃথিবীর নাতিশীতোষ্ণ অংশে, এই বনগুলি নিডল পাতাযুক্ত গাছ হতে থাকে, যখন গ্রীষ্মমণ্ডলীয় অঞ্চলে, তারা বৃষ্টির বনে বেড়ে ওঠা বিস্তৃত পাতার গাছ হতে পারে। পাহাড় ও মানুষ সর্বাধিক পরিচিত স্থায়ীভাবে সহনীয় উচ্চতা হলো । খুব উচ্চ উচ্চতায়, বায়ুমণ্ডলীয় চাপ হ্রাস মানে শ্বাস-প্রশ্বাসের জন্য কম অক্সিজেন পাওয়া যায় এবং সৌর বিকিরণের (ইউভি) বিরুদ্ধে কম সুরক্ষা থাকে। উপরে মানবজীবনের জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন নেই বলে এটি কখনও কখনও "ত্যু অঞ্চল হিসাবে উল্লেখ করা হয়"। এর সম্মেলন মাউন্ট এভারেস্ট এবং কে ২ মৃত্যু অঞ্চল। পার্বত্য সমাজ এবং অর্থনীতি কঠোর আবহাওয়া এবং সামান্য সমতল ভূমির কৃষির জন্য উপযোগী এ কারণে পাহাড় সাধারণত নিম্নভূমির তুলনায় মানুষের বসবাসের জন্য কম পছন্দনীয়। যদিও পৃথিবীর ভূমির ৭% এর উপরে, মাত্র ১৪০ মিলিয়ন মানুষ এই উচ্চতার উপরে বাস করে এবং মাত্র ২০-৩০ মিলিয়ন মানুষ উচ্চতা। প্রায় অর্ধেক পর্বতবাসী আন্দিজ, মধ্য এশিয়া এবং আফ্রিকায় বাস করে। থাম্ব|লা পাজ শহরটি উচ্চতায় ৪,০০০ মিটার (১৩,০০০ ফুট) পর্যন্ত পৌঁছেছে। অবকাঠামোতে সীমিত প্রবেশ সহ, মাত্র কয়েকটি মানব সম্প্রদায় উপরে উচ্চতা বিদ্যমান। অনেকগুলিই ছোট এবং তাদের প্রচুর বিশেষায়িত অর্থনীতি রয়েছে, প্রায়শই কৃষি, খনি এবং পর্যটনের মতো শিল্পের উপর নির্ভর করে। এই ধরনের একটি বিশেষায়িত শহরের উদাহরণ হল লা রিনকোনাডা, পেরু, একটি সোনার খনির শহর এবং উচ্চতায় মানব বাসস্থান। । একটি বিপরীত উদাহরণ হল এল আল্টো, বলিভিয়া, , যার একটি অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় পরিষেবা এবং উত্পাদন অর্থনীতি এবং প্রায় ১ মিলিয়ন জনসংখ্যা রয়েছে। ঐতিহ্যবাহী পর্বত সমাজ কৃষির উপর নির্ভর করে, নিম্ন উচ্চতার তুলনায় শস্য ব্যর্থতার ঝুঁকি বেশি। খনিজগুলি প্রায়শই পাহাড়ে পাওয়া যায়, খনি কিছু পাহাড়ী সমাজের অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। অতি সম্প্রতি, জাতীয় উদ্যান বা স্কি রিসর্টের মতো আকর্ষণগুলির আশেপাশে কিছু নিবিড় উন্নয়ন সহ পর্যটন পর্বত সম্প্রদায়কে সমর্থন করে৷ প্রায় ৮০% পাহাড়ি মানুষ দারিদ্র্যসীমার নিচে বাস করে। পৃথিবীর অধিকাংশ নদী পাহাড়ের উৎস থেকে পালিত হয়, তুষার নিম্নধারা ব্যবহারকারীদের জন্য সংরক্ষণ পদ্ধতি হিসেবে কাজ করে। মানবজাতির অর্ধেকের বেশি পানির জন্য পাহাড়ের ওপর নির্ভরশীল। ভূ-রাজনীতিতে পর্বতগুলিকে প্রায়শই রাজনীতির মধ্যে পছন্দের " প্রাকৃতিক সীমানা " হিসাবে দেখা হয়। পর্বতারোহণ থাম্ব|দক্ষিণ টাইরোলে পর্বতারোহণকারীরা আরোহণ করছে পর্বত আরোহণ, বা আলপিনিজম হল খেলা, শখ বা হাইকিং, স্কিইং এবং পর্বতে আরোহণের পেশা । পর্বতারোহণ শুরু না হওয়া বড় পর্বতমালার সর্বোচ্চ বিন্দুতে পৌঁছানোর প্রচেষ্টা হিসাবে এটি বিশেষায়িত হয়েছে যা পর্বতের বিভিন্ন দিককে সম্বোধন করে এবং তিনটি ক্ষেত্র নিয়ে গঠিত: রক-ক্র্যাফ্ট, স্নো-ক্র্যাফ্ট এবং স্কিইং, বেছে নেওয়া রুট শেষ হয়েছে কিনা তার উপর নির্ভর করে। শিলা, তুষার বা বরফ । নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য সকলের অভিজ্ঞতা, অ্যাথলেটিক ক্ষমতা এবং ভূখণ্ডের প্রযুক্তিগত জ্ঞান প্রয়োজন। পবিত্র স্থান হিসেবে পাহাড় পর্বত প্রায়ই ধর্মে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। উদাহরণস্বরূপ গ্রীসের অভ্যন্তরে অনেকগুলি পবিত্র পর্বত রয়েছে যেমন মাউন্ট অলিম্পাস যা দেবতাদের আবাসস্থল হিসাবে বিবেচিত ছিল। জাপানি সংস্কৃতিতে, ৩,৭৭৬.২৪মি (১২,৩৮৯ ফিট) মাউন্ট ফুজির আগ্নেয়গিরিকেও পবিত্র বলে মনে করা হয় যেখানে প্রতি বছর হাজার হাজার জাপানি আরোহণ করে। চীনের তিব্বত স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের কৈলাশ পর্বতকে চারটি ধর্মে পবিত্র বলে মনে করা হয়: হিন্দুধর্ম, বন, বৌদ্ধ এবং জৈন ধর্ম । আয়ারল্যান্ডে, তীর্থযাত্রাগুলি নিয়ে গঠিত আইরিশ ক্যাথলিকদের দ্বারা মাউন্ট ব্র্যান্ডন । নন্দা দেবীর হিমালয় শিখর হিন্দু দেবী নন্দা ও সুনন্দার সাথে যুক্ত; এটি ১৯৮৩ সাল থেকে পর্বতারোহীদের জন্য সীমাবদ্ধ নয়। মাউন্ট আরারাত একটি পবিত্র পর্বত, কারণ এটি নোহের জাহাজের অবতরণ স্থান বলে মনে করা হয়। ইউরোপে এবং বিশেষ করে আল্পস পর্বতমালায়, প্রায়শই বিশিষ্ট পর্বতের চূড়ায় সামিট ক্রস তৈরি করা হয়। শ্রেষ্ঠত্ব থাম্ব|চিম্বোরাজো, ইকুয়েডর । পৃথিবীর পৃষ্ঠের বিন্দু তার কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরে। পাহাড়ের উচ্চতা সাধারণত সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে পরিমাপ করা হয়। এই মেট্রিক ব্যবহার করে, মাউন্ট এভারেস্ট পৃথিবীর সর্বোচ্চ পর্বত, । এর বেশি উচ্চতা সহ কমপক্ষে ১০০ টি পর্বত রয়েছে সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে, যার সবকটিই মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতম পর্বতগুলি সাধারণত আশেপাশের ভূখণ্ডের উপরে নয়। আশেপাশের ঘাঁটির কোন সুনির্দিষ্ট সংজ্ঞা নেই, তবে ডেনালি, মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো এবং নাঙ্গা পার্বত এই পরিমাপের দ্বারা ভূমিতে সবচেয়ে উঁচু পর্বতের জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী। পর্বত দ্বীপের ঘাঁটি সমুদ্রপৃষ্ঠের নিচে, এবং এই বিবেচনায় মাউনা কেয়া ( সমুদ্রপৃষ্ঠের উপরে) বিশ্বের সবচেয়ে উঁচু পর্বত এবং আগ্নেয়গিরি, প্রায় প্রশান্ত মহাসাগরের তল থেকে। সর্বোচ্চ পর্বতগুলি সাধারণত বেশি বড় হয় না। ভিত্তি এলাকার দিক থেকে মাওনা লোয়া ( ) হল পৃথিবীর বৃহত্তম পর্বত (প্রায় ) এবং আয়তন (প্রায় )। মাউন্ট কিলিমাঞ্জারো হল সবচেয়ে বড় নন-শিল্ড আগ্নেয়গিরি উভয় বেস এলাকা ( ) এবং আয়তন ( )। মাউন্ট লোগান বেস এলাকার বৃহত্তম অ-আগ্নেয় পর্বত ( )। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতম পর্বতমালা সেই নয় যেগুলির শিখরগুলি পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরে, কারণ পৃথিবীর চিত্রটি গোলাকার নয়৷ নিরক্ষরেখার কাছাকাছি সমুদ্রপৃষ্ঠ পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে কয়েক মাইল দূরে। ইকুয়েডরের সর্বোচ্চ পর্বত চিম্বোরাজোর চূড়াটিকে সাধারণত পৃথিবীর কেন্দ্র থেকে সবচেয়ে দূরবর্তী বিন্দু হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যদিও পেরুর সবচেয়ে উঁচু পর্বত হুয়াসকারানের দক্ষিণের চূড়া আরেকটি প্রতিযোগী। উভয়েরই সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে উচ্চতা রয়েছে এভারেস্টের চেয়ে কম। চিত্রশালা আরও দেখুন পর্বতশ্রেণীর তালিকা বিশিষ্টতা অনুসারে শিখরগুলির তালিকা স্কি এলাকা এবং রিসর্ট তালিকা পাহাড়ের তালিকা সপ্তশৃঙ্গ তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:ভূগোল বিষয়শ্রেণী:ভূগোল পরিভাষা বিষয়শ্রেণী:ভূত্বক বিষয়শ্রেণী:পর্বত
ব্যাঙের ছাতা
https://bn.wikipedia.org/wiki/ব্যাঙের_ছাতা
REDIRECT ছত্রাক
পুরাণ (ভারতীয় শাস্ত্র)
https://bn.wikipedia.org/wiki/পুরাণ_(ভারতীয়_শাস্ত্র)
thumb|300px| অষ্টমাতৃকা-সহ দেবী অম্বিকা (দুর্গা) রক্তবীজ দৈত্যের বিরুদ্ধে যুদ্ধরত; দেবীমাহাত্ম্যম্, মার্কণ্ডেয় পুরাণের পুথিচিত্র পুরাণ (সংস্কৃত: , "প্রাচীনযুগীয়") হিন্দু, বৌদ্ধ ও জৈন ধর্মাবলম্বীদের গুরুত্বপূর্ণ আখ্যানমূলক ধর্মগ্রন্থ-সমুচ্চয়। পুরাণে সৃষ্টি থেকে প্রলয় পর্যন্ত ব্রহ্মাণ্ডের ইতিহাস, রাজন্যবর্গ, যোদ্ধৃবর্গ, ঋষি ও উপদেবতাগণের বংশবৃত্তান্ত এবং হিন্দু সৃষ্টিতত্ত্ব, দর্শন ও ভূগোলতত্ত্ব আলোচিত হয়েছে।Puranas at Sacred Texts পুরাণে সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো দেবতাকে প্রাধান্য দেওয়া হয় এবং তাতে ধর্মীয় ও দার্শনিক চিন্তার প্রাবল্যও লক্ষিত হয়। এই গ্রন্থগুলি প্রধানত আখ্যায়িকার আকারে রচিত, যা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত। লোকমতে, মহাভারত-রচয়িতা ব্যাসদেব পুরাণসমূহের সংকলক।The Puranas by Swami Sivananda যদিও পুরাণের সর্বাপেক্ষা প্রাচীন পাঠগুলি গুপ্ত সাম্রাজ্যের (খ্রিস্টীয় তৃতীয়-পঞ্চম শতাব্দী) সমসাময়িক। এর অধিকাংশ উপাদানই ঐতিহাসিক বা অন্যান্য সূত্রাণুযায়ী এই সময়কাল ও তার পরবর্তী শতাব্দীগুলির সঙ্গে সম্পর্কিত। পুরাণগ্রন্থগুলি ভারতের নানা স্থানে রচিত হয়েছিল। পুরাণের সামগ্রিক পাঠে কিছু সাধারণ ধারণা লক্ষিত হয়; কিন্তু একটি পুরাণের উপর অপর আরেকটি পুরাণের প্রভাব অন্বেষণ দুঃসাধ্য। তাই সাধারণভাবে এগুলিকে সমসাময়িক বলেই ধরে নেওয়া হয়।. লিখিত পাঠ্যগুলির রচনাতারিখ পুরাণের প্রকৃত রচনাতারিখ নয়। কারণ একথা নিঃসন্দেহে বলা যায় যে পূর্ববর্তী এক সহস্রাব্দ কাল ধরে এই কাহিনিগুলি মৌখিকভাবে প্রচারিত হয়ে আসে। এবং পরবর্তীকালে মধ্যযুগ থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত এগুলির আকার ও রূপ পরিবর্তিত হতে দেখা যায়।Nagendra Kumar Singh (ed.), Encyclopaedia of Hinduism, (1997) , p. 2324 কাশীর মহারাজা ডক্টর বিভূতি নারায়ণ সিংহের পৃষ্ঠপোষকতা ও তত্ত্বাবধানে অল ইন্ডিয়া কাশীরাজ ট্রাস্ট গঠিত হলে পুরাণ নিয়ে সুসংহত গবেষণার কাজ শুরু হয়। এই সংস্থা থেকে পুরাণের সমালোচনামূলক সংস্করণ এবং পুরাণম্ নামে একটি পত্রিকা প্রকাশিত হতে থাকে। উৎস thumb|300px|ভাগবত পুরাণে বর্ণিত বরাহ অবতারের চিত্র খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দে রচিত ছান্দোগ্য উপনিষদে (৭।১।২) পুরাণের একটি প্রাচীন উল্লেখ পাওয়া যায়। বৃহদারণ্যক উপনিষদ পুরাণকে "পঞ্চম বেদ" নামে অভিহিত করে,Brhadaranyaka Upanisad 2.4.10, 4.1.2, 4.5.11. Satapatha Brahmana (SBE, Vol. 44, pp. 98, 369). Moghe 1997:160,249 (ইতিহাসপুরাণং পঞ্চমং বেদম্)। এতে প্রাচীন যুগে পুরাণের ধর্মীয় গুরুত্বের কথা জানা যায়। সম্ভবত সেই যুগে পুরাণ মৌখিকভাবে প্রচারিত হত। অথর্ববেদেও (১১।৭।১৪) এই শব্দটির উল্লেখ পাওয়া যায়।;Moghe 1997:249 and the Satapatha Brahmana 11.5.6.8. and 13.4.3.13. SBE Vol. 44, pp. 98, 369 মৎস্য পুরাণ অনুসারে,Matsya Purana 53.65 পুরাণের মূল বিষয় পাঁচটি। এগুলি পঞ্চলক্ষণ নামে পরিচিত – সর্গ – ব্রহ্মাণ্ডের সৃষ্টিকাহিনি প্রতিসর্গ – পরবর্তীকালের (মুখ্যত প্রলয় পরবর্তী) সৃষ্টিকাহিনি বংশ – দেবতা ও ঋষিদের বংশবৃত্তান্ত মন্বন্তর – মানবজাতির সৃষ্টি ও প্রথম সৃষ্ট মানবজাতির কাহিনি। মনুর শাসনকালের কথা; এই শাসনকাল ৭১টি দিব্য যুগ বা ৩০৮,৪৪৮,০০০ বছরের সমান বংশানুচরিতম্ – রাজবংশের ইতিহাস কোনো কোনো পণ্ডিতের মতে পঞ্চলক্ষণ নামে পরিচিত এই বিশেষ লক্ষণগুলি অন্যান্য ধর্মগ্রন্থেও দৃষ্ট হয়। পুরাণের বক্তব্য অনুসারে একটি পুরাণশাস্ত্র সৃষ্টিকর্তা ব্রহ্মা সৃষ্টির পূর্বে রচনা করেছিলেন, প্রত্যেক দ্বাপর যুগে ব্যাসদেব এসে সেটি সংক্ষিপ্ত করে একটি পুরাণ কে ১৮টি ভাগে বিভক্ত করে ১৮টি পুরাণ বিরচিত করেছিলেন। পুরাণে বংশবৃত্তান্ত লিপিবদ্ধ রাখার উপরেও গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। বায়ু পুরাণ অনুসারে: "পুরাকালে ল দেবতা, ঋষি, গৌরবশালী রাজন্যবর্গের বংশবৃত্তান্ত ও মহামানবদের কিংবদন্তি লিপিবদ্ধ রাখার দায়িত্ব সূতের উপর অর্পিত হয়।"Vayu Purana 1. 31-2. পৌরাণিক বংশবৃত্তান্ত অনুযায়ী মনু বৈবস্বত ভারত যুদ্ধের ৯৫ প্রজন্ম পূর্বে জীবিত ছিলেন।R. C. Majumdar and A. D. Pusalker (editors): The history and culture of the Indian people. Volume I, The Vedic age. Bombay: Bharatiya Vidya Bhavan 1951, p.273 পারগিটার (১৯২২) বলেছেন, "মূল পুরাণগুলি" ("original Purana") সম্ভবত বেদের সর্বশেষ লিখিত রূপের সমসাময়িক। এবং পারগিটার (১৯৭৯) মনে করেন,Pargiter 1979P.L. Bhargava 1971, India in the Vedic Age, Lucknow: Upper India Publishing; Talageri 1993, 2000; Subhash Kak, 1994, The astronomical code of the Rgveda বায়ু পুরাণে যে যুগগুলি ৪৮০০, ৩৬০০, ২৪০০ ও ১২০০ বছরে বিভক্ত হয়েছে তার মধ্যে পৌরাণিক কৃত যুগ " সমাপ্তি রাম জমদগ্ন্যের দ্বারা হৈহয়দের ধ্বংসপ্রাপ্তিতে; ত্রেতা যুগের সূত্রপাত রাজা সগরের সময়কালে এবং সমাপ্তি রাম দাশরথি কর্তৃক রাক্ষস ধ্বংসে; দ্বাপর যুগের সূত্রপাত অযোধ্যা-প্রত্যাবর্তনে এবং সমাপ্তি ভারতযুদ্ধে।"Pargiter 1922:177 আরিয়ান রচিত ইন্ডিকায়, মেগাস্থিনিস থেকে উদ্ধৃতি দিয়ে বলা হয়েছে যে ভারতীয়রা শিব (ডায়োনিসাস) থেকে চন্দ্রগুপ্ত মৌর্য (সান্ড্রাকোটাস) পর্যন্ত "ছয় হাজার তেতাল্লিশ বছরে একশো তিপান্ন জন রাজা" গণনা করে।Pliny: Naturalis Historia 6:59; Arrian: Indica 9:9 খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম শতাব্দীতে রচিত বৃহদারণ্যক উপনিষদে (৪।৬) গুরু-পরম্পরায় ৫৭টি যোগসূত্রের কথা বলা হয়েছে। এর অর্থ গুরু-পরম্পরা তারও ১৪০০ বছর আগে থেকে প্রচলিত ছিল। যদিও এই তালিকার যথার্থতা নিয়ে মতদ্বৈধ রয়েছে।(see Klaus Klostermaier 1989 and Arvind Sharma 1995) কহ্লন রচিত রাজতরঙ্গিনী গ্রন্থে বর্ণিত রাজাবলিতে খ্রিস্টপূর্ব ঊনবিংশ শতাব্দী পর্যন্ত রাজাদের তালিকা পাওয়া যায়।Elst 1999, with reference to Bernard Sergent পুরাণ গ্রন্থসমুচ্চয় এমন এক জটিল উপাদান-সংগ্রহ যাতে বিভিন্ন প্রতিদ্বন্দ্বী সম্প্রদায়ের উদ্ভবতত্ত্ব বর্ণিত হয়েছে। তাই গেভিন ফ্লাড ঐতিহাসিকভাবে লিখিত পুরাণের উদ্ভবের সঙ্গে গুপ্তযুগে নির্দিষ্ট দেবতাকেন্দ্রিক ধর্মসম্প্রদায়ের উদ্ভবের ঘটনাকে পরস্পর সম্পর্কযুক্ত মনে করেছেন: যদিও এই গ্রন্থগুলি পরস্পর সম্পর্কযুক্ত এবং এদের একটিতে অপরটির উপাদান প্রায়শই গৃহীত হয়েছে, তবুও বলতে হয়, প্রতিটি গ্রন্থেই ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিতে জগতকে দেখা হয়েছে। এগুলিকে প্রচলিত উপকথার এলোপাথাড়ি সংকলন মনে করা উচিত নয়। এগুলি সুসংকলিত, বিষয়গতভাবে সুসংবদ্ধ, বিশ্বচেতনার অভিপ্রকাশ এবং ধর্মীয় তত্ত্বকথা। ব্রাহ্মণদের নির্দিষ্ট গোষ্ঠী নির্দিষ্ট দর্শনকে তুলে ধরার জন্য এগুলি সংকলন করেছিলেন; কেবল কেউ বিষ্ণু, কেউ শিব, কেউ বা দেবী বা অন্য কোনো দেবতার উপর আলোকপাত করেন। স্থানীয় ভাষার অনুবাদে পুরাণগুলি সহজলভ্য। কথক নামে পরিচিত ব্রাহ্মণ পণ্ডিতেরা মন্দিরে মন্দিরে ঘুরে কথকতার মাধ্যমে ভক্তির দৃষ্টিকোণ থেকে পুরাণের কাহিনিগুলি জনসমাজে প্রচার করে সাধারণ্যে এর জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি করেন। পুরাণগুলির তালিকা মহাপুরাণ পুরাণ নামাঙ্কিত সাহিত্যধারায় সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ গ্রন্থ মহাপুরাণ (সংস্কৃত: महापूराण, s)। সাধারণ বিশ্বাস অনুযায়ী মহাপুরাণের সংখ্যা আঠারো এবং এগুলি ছয়টি করে পুরাণযুক্ত তিনটি পৃথক শ্রেণিতে বিন্যস্ত। যদিও এই সংখ্যা ও শ্রেণিবিভাগ নিয়ে দ্বিমত রয়েছে। বিভিন্ন সূত্র অধ্যয়ন করে ডিমিট ও ভ্যান বুইটেনেন ২০টি মহাপুরাণের একটি তালিকা প্রস্তুত করেন: thumb|অগ্নিপুরাণ-এর প্রবক্তা হিন্দু দেবতা অগ্নি, অজ্ঞাত শিল্পী, পুনে, ১৮০০-০৫। অগ্নিপুরাণ বা আগ্নেয় পুরাণ: সঠিক রচনাকাল জানা যায় না। শ্লোকসংখ্যা ১১৫০০। এটি একটি প্রাচীন পুরাণ এবং একে "পৌরাণিক ও সাহিত্যবিদ্যার কোষগ্রন্থ" বলা হয়। কিংবদন্তি অনুসারে, ঋষি বশিষ্ঠের অনুরোধে অগ্নি এই পুরাণ রচনা করেছিলেন। এই পুরাণে বিষ্ণুর বিভিন্ন অবতারের বর্ণনা, বংশানুচরিত, সৃষ্টিতত্ত্ব, ভূগোল, ছন্দ, অলংকার, ব্যাকরণ, স্মৃতিশাস্ত্র, আয়ুর্বেদ, রাজনীতি, অশ্বচিকিৎসা ইত্যাদির বর্ণনা আছে। এটি বৈষ্ণব পুরাণ; তবে এতে তান্ত্রিক উপাসনা পদ্ধতি, লিঙ্গপূজা, দুর্গাপূজা ইত্যাদি শাক্ত ও শৈব বিষয়বস্তুও সংযোজিত হয়েছে।সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস, ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষৎ, কলকাতা, ২০০৯, পৃ. ১১০ ভাগবত পুরাণ (১৮,০০০ শ্লোক) – সর্বাধিক প্রসিদ্ধ ও জনপ্রিয় পুরাণA Sanskrit-English Dictionary. Sir Monier Monier-Williams. Oxford: Oxford University Press, 1899. Page 752, column 3, under the entry Bhagavata.। এই পুরাণের মূল উপজীব্য বিষ্ণুর দশাবতারের কাহিনি। দশম স্কন্দটি গ্রন্থের বৃহত্তম অধ্যায়; এই অধ্যায়ে কৃষ্ণের লীলা বর্ণিত হয়েছে। পরবর্তীকালে একাধিক ভক্তি আন্দোলনের মুখ্য বিষয়বস্তু কৃষ্ণের বাল্যলীলা এই পুরাণেই লিপিবদ্ধ।Viraha-Bhakti - The Early History of Krsna Devotion in South India - Friedhelm Hardy. ভবিষ্য পুরাণ (১৪,৫০০ শ্লোক) ব্রহ্মপুরাণ বা আদিপুরাণ (রচনাকাল আনুমানিক খ্রিস্টীয় অষ্টম-দ্বাদশ শতাব্দী): শ্লোকসংখ্যা ২৪,০০। কিংবদন্তি অনুসারে, সূত লোমহর্ষণ নৈমিষারণ্যে উপস্থিত ঋষিদের কাছে এই পুরাণ প্রথম বর্ণনা করেন। এই পুরাণে ব্রহ্মাণ্ডের উৎপত্তি, দেব, মনু চন্দ্র ও সূর্য বংশের বিবরণ, বিশ্বের ভূগোল, স্বর্গ-নরক, তীর্থের মাহাত্ম্য, সূর্য ও বিষ্ণু উপসনার পদ্ধতি, আদিত্যগণের বিবরণ, বিষ্ণু-সংক্রান্ত পৌরাণিক গল্প, শিব-পার্বতীর গল্প, কৃষ্ণের জীবনী, বর্ণাশ্রম ধর্ম, নীতিধর্ম ইত্যাদি বর্ণনা করা হয়েছে। এই পুরাণের প্রক্ষিপ্ত অংশগুলি অন্যান্য পুরাণ থেকে গৃহীত এবং কয়েকটি প্রক্ষিপ্ত তীর্থমাহাত্ম্যের বর্ণনা বৈষ্ণব, শাক্ত, শৈব ও সৌর সম্প্রদায়ের লেখকদের রচনা।সংস্কৃত সাহিত্যের ইতিহাস, ধীরেন্দ্রনাথ বন্দ্যোপাধ্যায়, পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য পুস্তক পর্ষৎ, কলকাতা, ২০০৯, পৃ. ১০৪-০৫ ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ (১২,০০০ শ্লোক; হিন্দু প্রার্থনাগাথা ললিত সহস্রনাম এই গ্রন্থের অন্তর্গত) ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ (১৮,০০০ শ্লোক) গরুড় পুরাণ (১৯,০০০ শ্লোক) হরিবংশ পুরাণ (১৬,০০০ শ্লোক; ইতিহাস নামে সমধিক আখ্যাত) কূর্ম পুরাণ (১৭,০০০ শ্লোক) লিঙ্গ পুরাণ (১১,০০০ শ্লোক) মার্কণ্ডেয় পুরাণ (৯,০০০ শ্লোক; পবিত্র শাক্ত ধর্মগ্রন্থ দেবীমাহাত্ম্যম্ এই পুরাণভুক্ত) মৎস্য পুরাণ (১৪,০০০ শ্লোক) নারদ পুরাণ (২৫,০০০ শ্লোক) পদ্ম পুরাণ (৫৫,০০০ শ্লোক) শিব পুরাণ (২৪,০০০ শ্লোক) স্কন্দ পুরাণ (৮১,১০০ শ্লোক) – বৃহত্তম পুরাণ। একাধিক পাঠান্তর সংবলিত এই পুরাণের অন্তর্ভুক্ত রয়েছে বহু কাহিনি-উপকাহিনি ও কিংবদন্তির কথা। একাধিক গ্রন্থে এই পুরাণের উদ্ধৃতি প্রাপ্ত হয়। বামন পুরাণ (১০,০০০ শ্লোক) বরাহ পুরাণ (১০,০০০ শ্লোক) বায়ু পুরাণ (২৪,০০০ শ্লোক) বিষ্ণু পুরাণ (২৩,০০০ শ্লোক) ত্রিমূর্তির বিচারে নিম্নলিখিত তিন শ্রেণিতে পুরাণগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়ে থাকে। আবার পদ্ম পুরাণPadma Purana, Uttara-khanda, 236.18–21 অনুসারে সত্ত্বগুণ, রজোগুণ ও তমোগুণ – এই ত্রিগুণের আলোকে পুরাণ তিনপ্রকার হয়ে থাকে: বৈষ্ণব পুরাণব্রাহ্ম পুরাণশৈব পুরাণসাত্ত্বিকরাজসিকতামসিক বিষ্ণু পুরাণ ভাগবত পুরাণ নারদেয় পুরাণ গরুড় পুরাণ পদ্ম পুরাণ বরাহ পুরাণ ব্রহ্মা পুরাণ ব্রহ্মাণ্ড পুরাণ ব্রহ্মবৈবর্ত পুরাণ মার্কণ্ডেয় পুরাণ ভবিষ্য পুরাণ বামন পুরাণ মৎস্য পুরাণ লিঙ্গ পুরাণ শিব পুরাণ অথবা বায়ু পুরাণ (বায়ু পুরাণ নিয়ে মতভেদ দেখা যায়) স্কন্দ পুরাণ অগ্নি পুরাণ কূর্ম পুরাণ উপপুরাণ উপপুরাণ (সংস্কৃত: उपपुराण, ) অপেক্ষাকৃত কম গুরুত্বপূর্ণ অথবা আনুষঙ্গিক ধর্মগ্রন্থ। কোনো কোনো মতে উপপুরাণ আঠারোটি। কিন্তু মহাপুরাণের সংখ্যার মতোই এই সংখ্যা নিয়েও দ্বিমত রয়েছে। কয়েকটি উপপুরাণ সমালোচনার সহিত সম্পাদিত হয়েছে। +উপপুরাণের তালিকাসনৎকুমার নৃসিংহ বৃহন্নারদীয় শিবরহস্য দুর্বাশা কপিলবামন ভার্গব বরুণ কালিকা শাম্ব নন্দীসূর্য পরাশর বশিষ্ট দেবীভাগবত গণেশ হংস মুদগলR. C. Hazra, Studies in the Upapuranas, vol. I, Calcutta, Sanskrit College, 1958. Studies in the Upapuranas, vol. II, Calcutta, Sanskrit College, 1979. Studies in Puranic Records on Hindu Rites and Customs, Delhi, Banarsidass, 1975. Ludo Rocher, The Puranas - A History of Indian Literature Vol. II, fasc. 3, Wiesbaden: Otto Harrassowitz, 1986. গণেশ ও মুদগল পুরাণ গণেশের মহিমাবাচক। দেবীভাগবত পুরাণ দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য কীর্তন করে। মার্কণ্ডেয় পুরাণের দেবীমাহাত্ম্যম্ অংশের সঙ্গে এই পুরাণটিও শক্তি উপাসকদের মূল ধর্মগ্রন্থ বলে বিবেচিত হয়।The Triumph of the Goddess: The Canonical Models and Theological Visions of the DevI-BhAgavata PuraNa, Brwon Mackenzie. ভারতীয় উপমহাদেশে এইরূপ অনেক উপপুরাণের সন্ধান পাওয়া যায়।<ref>'`Verbal Narratives: Performance and Gender of the Padma Purana, by T.N. Sankaranarayana in Chanted Narratives - The Katha Vachana Tradition, Edited by Molly Kaushal, p. 225–234. </ref> তার মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য বঙ্গদেশ ও অসমে প্রচলিত সর্পদেবী মনসার মহিমাজ্ঞাপক পদ্মপুরাণ। স্থলপুরাণ সংস্কৃতে স্থল শব্দের অর্থ স্থান। পুরাণের এই বিশেষ অংশটি মন্দির বা তীর্থের উৎপত্তি ও মাহাত্ম্য বর্ণনা করে। স্থলপুরাণ অসংখ্য; বেশিরভাগই স্থানীয় ভাষায় রচিত; যদিও কয়েকটির সংস্কৃত পাঠান্তরও পাওয়া যায়। আবার কোনো কোনো স্থলপুরাণকে মহাপুরাণ বা উপপুরাণেও বর্ণিত হতে দেখা যায়। ডেভিড ডিন শ্যুলম্যান তামিল স্থলপুরাণগুলির উপর গুরুত্বপূর্ণ গবেষণাকর্ম চালিয়েছেন।Tamil Temple Myths: Sacrifice and Divine Marriage in the South Indian Saiva Tradition, David Dean Shulman. কুলপুরাণ সংস্কৃতে কুল শব্দের অর্থ পরিবার বা গোত্র''। কুলপুরাণ সাধারণত নির্দিষ্ট বর্ণের উদ্ভব, আখ্যান ও কিংবদন্তির বর্ণনা দেয়। বর্ণভেদ পরিচয়ের একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল কুলপুরাণ। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই প্রতিদ্বন্দ্বী বর্ণের কুলপুরাণের দ্বারা এই পুরাণগুলির বক্তব্য খণ্ডিত হয়েছে। কুলপুরাণ সাধারণত স্থানীয় ভাষায় লিখিত অথবা অনেক ক্ষেত্রে মৌখিক পরম্পরায় প্রচারিত।'Kulapuranas' - Pulikonda Subbachary in Folklore in Modern India, edited by Jawaharlal Handoo, p. 125-142. কুলপুরাণগুলি নিয়ে গবেষণাকর্ম কমই হয়েছে। তবে ব্রিটিশ জনগণনা রিপোর্টে ও বিভিন্ন গেজেটিয়ারে এগুলি নথিবদ্ধ করা হয়।See for example Castes and Tribes of Southern India vol. I–V, Thurston Edgar. Cosmo Publication, Delhi. জৈন ও বৌদ্ধ পুরাণ বৌদ্ধ স্বয়ম্ভু পুরাণে কাঠমান্ডু উপত্যকার ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে। জৈন পুরাণগুলিতে বর্ণিত হয়েছে জৈন লোকগাথা, ইতিহাস ও কিংবদন্তির কথা। জৈন পুরাণ প্রাচীন কন্নড় সাহিত্যের প্রধান উপাদান। এই পুরাণগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আচার্য জিনসেনের মহাপুরাণ। তবে জৈন পুরাণের উপর গবেষণা ও অনুবাদকর্ম কমই হয়েছে। পাদটীকা বিষয়শ্রেণী:পুরাণ বিষয়শ্রেণী:হিন্দু ধর্মগ্রন্থ বিষয়শ্রেণী:সংস্কৃত শব্দ ও শব্দবন্ধ
ক্যামেরুন
https://bn.wikipedia.org/wiki/ক্যামেরুন
থাম্ব|263x263পিক্সেল|ইউনিটি প্যালেস, ক্যামেরুন প্রেসিডেন্সি। ক্যামেরুন ( ইংরেজি ভাষায় : Cameroon; ; দুয়ালা: ; ইওন্ডো: ) হল পশ্চিম-মধ্য আফ্রিকার একটি দেশ। এর সরকারি নাম হল ক্যামেরুন প্রজাতন্ত্র। এটির পশ্চিম ও উত্তরে নাইজেরিয়া; উত্তর–পূর্বে চাদ; পূর্বে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং দক্ষিণে নিরক্ষীয় গিনি, গ্যাবন ও কঙ্গো প্রজাতন্ত্র অবস্থিত। এর উপকূলরেখা বিয়াফ্রার বাইট, গিনি উপসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরের অংশে অবস্থিত। পশ্চিম ও মধ্য আফ্রিকার সংযোগস্থলে এর কৌশলগত অবস্থানের কারণে তাকে কখনও পশ্চিম আফ্রিকীয় ও কখনো মধ্য আফ্রিকীয় হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। এর প্রায় ২৫ মিলিয়ন মানুষ ২৫০ টি স্থানীয় ভাষায় কথা বলে। এই অঞ্চলের প্রাথমিক বাসিন্দাদের মধ্যে ছিল চাদ হ্রদের আশেপাশে সাও সভ্যতা এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেইনফরেস্টের বাকা শিকারী-সংগ্রাহক। পর্তুগিজ অভিযাত্রীরা ১৫ শতকে উপকূলে পৌঁছেছিলেন এবং এলাকার নাম দেন রিও ডস ক্যামারোয়েস (চিংড়ি নদী), যা ইংরেজিতে ক্যামেরুন হয়ে ওঠে। ফুলানি সৈন্যরা ১৯ শতকে উত্তরে আদামাওয়া এমিরেট প্রতিষ্ঠা করে এবং পশ্চিম ও উত্তর-পশ্চিমের বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠী গোত্র-প্রধান শাসন ও ফন শাসন প্রতিষ্ঠা করে। ক্যামেরুন ১৮৮৪ সালে কামেরুন নামে পরিচিত একটি জার্মান উপনিবেশে পরিণত হয়। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর, লিগ অফ নেশনস ম্যান্ডেট হিসাবে এটি ফ্রান্স এবং যুক্তরাজ্যের মধ্যে বিভক্ত হয়েছিল। ইউনিয়ন দেস পপুলেশনস ডু ক্যামেরুন (ইউপিসি) নামের রাজনৈতিক দল স্বাধীনতার সমর্থনে কাজ করেছিল, কিন্তু ১৯৫০-এর দশকে ফ্রান্স কর্তৃক এটিকে বেআইনি ঘোষণা করা হয়েছিল, যার ফলে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত ফরাসি এবং ইউপিসি জঙ্গি বাহিনীর মধ্যে জাতীয় মুক্তি বিদ্রোহ সংঘটিত হয়েছিল। ১৯৬০ সালে, ক্যামেরুনের ফরাসি-শাসিত অংশ। ক্যামেরুন প্রজাতন্ত্র হিসাবে, রাষ্ট্রপতি আহমাদু আহিদজোর অধীনে স্বাধীন হয়ে ওঠে। ব্রিটিশ ক্যামেরুনের দক্ষিণ অংশ ১৯৬১ সালে ক্যামেরুনের ফেডারেল রিপাবলিক গঠনের জন্য এটির সাথে যুক্ত হয়। ফেডারেশনটি ১৯৭২ সালে পরিত্যক্ত হয়। ১৯৭২ সালে দেশটির নামকরণ করা হয় ইউনাইটেড রিপাবলিক অফ ক্যামেরুন এবং ১৯৮৪ সালে ক্যামেরুন প্রজাতন্ত্র। পল বিয়া, দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রেসিডেন্ট, অহিদজোর পদত্যাগের পর ১৯৮২ সাল থেকে দেশটির নেতৃত্ব দিয়েছেন; তিনি এর আগে ১৯৭৫ সাল থেকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ক্যামেরুন একটি একক রাষ্ট্রপতি প্রজাতন্ত্র হিসাবে শাসিত হয়। ক্যামেরুনের অফিসিয়াল ভাষাগুলি হল ফরাসি এবং ইংরেজি, প্রাক্তন ফরাসি ক্যামেরুন এবং ব্রিটিশ ক্যামেরুনগুলির সরকারী ভাষা। এর ধর্মীয় জনসংখ্যা প্রধানত খ্রিস্টান, একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু ইসলাম ধর্ম পালন করে এবং অন্যান্যরা ঐতিহ্যগত বিশ্বাস অনুসরণ করে। এটি ইংরেজি-ভাষী অঞ্চলগুলি থেকে উত্তেজনা অনুভব করেছে, যেখানে রাজনীতিবিদরা বৃহত্তর বিকেন্দ্রীকরণ এবং এমনকি সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতা বা স্বাধীনতার পক্ষে কথা বলেছেন (দক্ষিণ ক্যামেরুন জাতীয় কাউন্সিলের মতো)। ২০১৭ সালে, ইংরেজি-ভাষী অঞ্চলগুলিতে একটি অ্যাম্বাজোনিয়ান রাজ্য তৈরির বিষয়ে উত্তেজনা প্রকাশ্য যুদ্ধে পরিণত হয়েছিল। বিপুল সংখ্যক ক্যামেরুনিয়ানরা জীবিকা নির্বাহকারী কৃষক হিসাবে বসবাস করে। ভূতাত্ত্বিক, ভাষাগত এবং সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যের জন্য দেশটিকে প্রায়ই "মিনি অ্যাফ্রিকা" বলা হয়। এর প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্যের মধ্যে রয়েছে সৈকত, মরুভূমি, পর্বতমালা, রেইনফরেস্ট এবং সাভানা। এর সর্বোচ্চ বিন্দু, প্রায় ৪,১০০ মিটার (১৩,৫০০ ফুট), দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের মাউন্ট ক্যামেরুন। সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার শহরগুলি হল উউরি নদীর উপর অবস্থিত ডুয়ালা, এর অর্থনৈতিক রাজধানী এবং প্রধান সমুদ্রবন্দর; ইয়াউন্ডে, এর রাজনৈতিক রাজধানী; এবং গারুয়া। ক্যামেরুন তার স্থানীয় সঙ্গীত শৈলী, বিশেষ করে মাকোসা এবং বিকুতসি এবং তার সফল জাতীয় ফুটবল দলের জন্য সুপরিচিত। এটি আফ্রিকান ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, অর্গানাইজেশন ইন্টারন্যাশনাল দে লা ফ্রাঙ্কোফোনি (ওআইএফ), কমনওয়েলথ অফ নেশনস, জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন (ন্যাম) এবং ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার (ওআইসি) সদস্য রাষ্ট্র। শব্দের ব্যুৎপত্তি মূলত, ক্যামেরুন ছিল পর্তুগিজদের দেয়া উউরি নদীকে প্রদত্ত ছদ্মরূপ, যাকে তারা রিও ডস ক্যামারোয়েস বা "চিংড়ি নদী" বলে ডাকত, যা তৎকালীন প্রচুর ক্যামেরুন ভূত চিংড়িকে নির্দেশ করে।Cameroon (adj.) nation in West Africa, its name is taken from the Anglicized form of the former name of the River Wouri, which was called by the Portuguese Rio dos Camarões "river of prawns" (16c.) for the abundance of these they found in its broad estuary. camarões is from Latin cammarus "a crawfish, prawn." বর্তমানে পর্তুগিজ ভাষায় দেশটির নাম 'ক্যামারোয়েস' রয়ে গেছে। ইতিহাস প্রাথমিক ইতিহাস বর্তমান ক্যামেরুন প্রথম নিওলিথিক যুগে বসতি স্থাপন করেছিল। দীর্ঘতম অবিচ্ছিন্ন বাসিন্দারা হল বাকা (পিগমি)। সেখান থেকে, পূর্ব, দক্ষিণ ও মধ্য আফ্রিকায় বান্টু অভিবাসন প্রায় ২,০০০ বছর আগে ঘটেছে বলে মনে করা হয়। সাও সংস্কৃতির উদ্ভব হয়েছিল লেক চাদকে ঘিরে, প্রায় ৫০০ খ্রিস্টাব্দে, এবং কানেম ও এর উত্তরাধিকারী রাজ্য, বোর্নু সাম্রাজ্যের দিকে ছেড়ে গিয়েছিল। পশ্চিমে কিংডম, ফন্ডম এবং চীফডমের উদ্ভব হয়েছিল। পর্তুগিজ নাবিকরা ১৪৭২ সালে উপকূলে পৌঁছেছিল। তারা উউরি নদীতে ভূত চিংড়ি বা লেপিডোফথালমাস টার্নেরানাসের প্রাচুর্য লক্ষ্য করে এবং এটির নাম দেয় রিও ডস ক্যামারোয়েস (চিংড়ি নদী), যা ইংরেজিতে ক্যামেরুনে পরিণত হয়। পরবর্তী কয়েক শতাব্দীতে, ইউরোপীয়রা উপকূলীয় জনগণের সাথে নিয়মিত বাণিজ্যে আগ্রহী হয় এবং খ্রিস্টান মিশনারিগুলো স্থানান্তরিত হয়। ১৯ শতকের গোড়ার দিকে, মোদিবো আদামা ফুলানি সৈন্যদের নিয়ে অমুসলিম এবং আংশিকভাবে মুসলিম জনগণের বিরুদ্ধে উত্তরাংশে একটি জিহাদে নেতৃত্ব দেন এবং আদমাওয়া আমিরাত প্রতিষ্ঠা করেন। ফুলানি থেকে পালিয়ে আসা বসতি স্থাপনকারীরা জনসংখ্যার একটি বড় পুনর্বণ্টন ঘটায়। ১৮৯৬ সালে, সুলতান ইব্রাহিম নজোয়া বামুম ভাষার জন্য বামুম লিপি বা শু মম তৈরি করেন। এটি আজ ক্যামেরুনে বামুম স্ক্রিপ্ট এবং আর্কাইভস প্রকল্প দ্বারা শেখানো হয়। সংযোগ=https://en.wikipedia.org/wiki/File:Shumom-text.jpg|বাম|থাম্ব|বামুম লিপি যা ১৯ শতকের শেষের দিকে রাজা নজোয়া দ্বারা উন্নীত লেখার পদ্ধতি জার্মান শাসন জার্মানি ১৮৬৮ সালে ক্যামেরুনে শিকড় স্থাপন শুরু করে যখন হ্যামবুর্গের ওয়্যারম্যান কোম্পানি একটি গুদাম তৈরি করে। এটি উউরি নদীর মোহনায় নির্মিত হয়েছিল। পরবর্তীতে গুস্তাভ নাচটিগাল স্থানীয় রাজাদের একজনের সাথে জার্মান সম্রাটের জন্য অঞ্চলটি সংযুক্ত করার একটি চুক্তি করেছিলেন। জার্মান সাম্রাজ্য ১৮৮৪ সালে কামেরুনের উপনিবেশ হিসাবে অঞ্চলটিকে দাবি করে এবং অভ্যন্তরীণ প্রবেশ শুরু করে। জার্মানরা স্থানীয় জনগণের প্রতিরোধের মুখে পড়েছিল যারা জার্মানদের এই ভূমিতে প্রতিষ্ঠিত হতে দিতে চায়নি। জার্মানির প্রভাবে, বাণিজ্যিক কোম্পানিগুলিকে স্থানীয় প্রশাসন নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এই বিশেষ ছাড় আফ্রিকানদেরকে লাভের জন্য বাধ্যতামূলক শ্রমে ব্যবহার করেছিল। এ শ্রম কলা, রাবার, পাম তেল, এবং কোকো বাগানে ব্যবহৃত হত। তারা জোরপূর্বক শ্রমের কঠোর ব্যবস্থার উপর নির্ভর করে উপনিবেশের অবকাঠামো উন্নত করার জন্য প্রকল্পগুলি শুরু করেছিল, যা অন্যান্য ঔপনিবেশিক শক্তি দ্বারা সমালোচিত হয়েছিল। ফরাসি ও ব্রিটিশ শাসন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানির পরাজয়ের মধ্যদিয়ে, কামেরুন একটি লীগ অফ নেশনস ম্যান্ডেট অঞ্চলে পরিণত হয় এবং ১৯১৯ সালে ফ্রেঞ্চ ক্যামেরুন (ফরাসি: ক্যামেরুন) এবং ব্রিটিশ ক্যামেরুনে বিভক্ত হয়। ফ্রান্স ক্যামেরুনের অর্থনীতিকে ফ্রান্সের সাথে একীভূত করে এবং পুঁজি বিনিয়োগ ও দক্ষ শ্রমিক সহ অবকাঠামো উন্নয়ন করে, জোরপূর্বক শ্রমের ঔপনিবেশিক ব্যবস্থাকে সংশোধন করে। ব্রিটিশরা প্রতিবেশী নাইজেরিয়া থেকে তাদের ভূখণ্ড পরিচালনা করত। স্থানীয়দের অভিযোগ যে এটি তাদের অবহেলিত "একটি উপনিবেশের উপনিবেশ" করে তুলেছে। নাইজেরিয়ান অভিবাসী শ্রমিকরা ঝাঁকে ঝাঁকে দক্ষিণ ক্যামেরুনে এসে জোরপূর্বক শ্রম বন্ধ করে দিয়েছিল কিন্তু যা স্থানীয় বাসিন্দাদের ক্ষুব্ধ করে, যারা ভুগছিলেন। লিগ অফ নেশনস ম্যান্ডেটগুলি ১৯৪৬ সালে জাতিসংঘের ট্রাস্টিশিপে রূপান্তরিত হয়েছিল এবং স্বাধীনতার প্রশ্নটি ফরাসি ক্যামেরুনে একটি চাপের বিষয় হয়ে ওঠে। ফ্রান্স ১৩ জুলাই ১৯৫৫-এ স্বাধীনতার স্বপক্ষের রাজনৈতিক দল, ইউনিয়ন অফ দ্য পিপলস অফ ক্যামেরুন (ইউনিয়ন দেস পপুলেশনস ডু ক্যামেরুন; ইউপিসি) বেআইনি ঘোষণা করে। যা ইউপিসি দ্বারা পরিচালিত একটি দীর্ঘ গেরিলা যুদ্ধ এবং রুবেন উম নিওবে, ফেলিক্স-রোল্যান্ড মউমি এবং আর্নেস্ট ওউয়ান্ডি সহ পার্টির বেশ কয়েকজন নেতাকে হত্যার প্ররোচনা দেয়। ব্রিটিশ ক্যামেরুনে, প্রশ্ন ছিল ফরাসি ক্যামেরুনের সাথে পুনর্মিলন বা নাইজেরিয়ায় যোগদান করা; ব্রিটিশরা স্বাধীনতার বিকল্প বাতিল করে দেয়। স্বাধীনতা ১৯৬০ সালের ১ জানুয়ারী, ফরাসি ক্যামেরুন রাষ্ট্রপতি আহমাদউ আহিদজোর নেতৃত্বে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। ১ অক্টোবর ১৯৬১-এ, প্রাক্তন ব্রিটিশ দক্ষিণ ক্যামেরুন জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদের ভোটের মাধ্যমে স্বাধীনতা লাভ করে এবং ফ্রেঞ্চ ক্যামেরুনের সাথে যুক্ত হয়ে ফেডারেল রিপাবলিক অফ ক্যামেরুন গঠন করে, যে দিনটি এখন একীকরণ দিবস ও সরকারী ছুটির দিন হিসাবে পালন করা হয়। অহিদজো ইউপিসির সাথে চলমান যুদ্ধকে প্রেসিডেন্সিতে ক্ষমতা কেন্দ্রীভূত করার জন্য ব্যবহার করেছিলেন, ১৯৭১ সালে ইউপিসি দমনের পরেও এটি অব্যাহত রেখেছিলেন। তার রাজনৈতিক দল, ক্যামেরুন ন্যাশনাল ইউনিয়ন (সিএনইউ), ১ সেপ্টেম্বর ১৯৬৬-এ একমাত্র আইনি রাজনৈতিক দল হয়ে ওঠে এবং ২০ মে ১৯৭২-এ, ক্যামেরুনের ইউনাইটেড রিপাবলিক অফ ক্যামেরুনের পক্ষে ফেডারেল সরকার ব্যবস্থা বাতিল করার জন্য একটি গণভোট পাস হয়। এই দিনটি এখন দেশের জাতীয় দিবস, একটি সরকারি ছুটির দিন। অহিদজো পরিকল্পিত উদারনীতির একটি অর্থনৈতিক নীতি অনুসরণ করেছিলেন, অর্থকরী ফসল এবং পেট্রোলিয়াম উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছিলেন। সরকার একটি জাতীয় নগদ রিজার্ভ তৈরি করতে, কৃষকদের বেতন দিতে এবং বড় উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করতে তেলের অর্থ ব্যবহার করেছিল; যাইহোক, অনেক উদ্যোগ ব্যর্থ হয় যখন অহিদজো তাদের পরিচালনার জন্য অযোগ্য মিত্রদের নিয়োগ করেন। অহিদজো ৪ নভেম্বর ১৯৮২-এ পদত্যাগ করেন এবং তার সাংবিধানিক উত্তরসূরি পল বিয়ার কাছে ক্ষমতা ছেড়ে দেন। যাইহোক, অহিদজো সিএনইউ-এর নিয়ন্ত্রণে ছিলেন বিয়া এবং তার সহযোগীরা তাকে পদত্যাগে চাপ না দেওয়া পর্যন্ত পর্দার আড়ালে থেকে দেশ চালানোর চেষ্টা করেছিলেন। বিয়া আরও গণতান্ত্রিক সরকারের দিকে অগ্রসর হওয়ার মাধ্যমে তার প্রশাসন শুরু করেন, কিন্তু একটি ব্যর্থ অভ্যুত্থান তাকে তার পূর্বসূরির নেতৃত্বের শৈলীর দিকে ধাবিত করে। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবস্থা, খরা, পেট্রোলিয়ামের দাম কমে যাওয়া এবং বছরের পর বছর ধরে দুর্নীতি, অব্যবস্থাপনা এবং স্বজনপ্রীতির ফলে ১৯৮০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে ১৯৯০-এর দশকের শেষের দিকে একটি অর্থনৈতিক সংকটে পড়তে হয়। ক্যামেরুন বিদেশী সাহায্যের দিকে ঝুঁকেছিল, সরকারী খরচ কমিয়ে এবং শিল্পকে বেসরকারীকরণ করতে হয়েছিল। ১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে বহু-দলীয় রাজনীতির পুনঃপ্রবর্তনের সাথে, প্রাক্তন ব্রিটিশ দক্ষিণ ক্যামেরুনের চাপ সৃষ্টিকারী গোষ্ঠীগুলি বৃহত্তর স্বায়ত্তশাসনের আহ্বান জানায় এবং দক্ষিণ ক্যামেরুন ন্যাশনাল কাউন্সিল অ্যাম্বাজোনিয়া প্রজাতন্ত্র হিসাবে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্নতার পক্ষে কথা বলে। ক্যামেরুনের ১৯৯২ সালের শ্রম আইন শ্রমিকদের একটি ট্রেড ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত হওয়ার বা কোনও ট্রেড ইউনিয়নের অন্তর্ভুক্ত না হওয়ার স্বাধীনতা দেয়। প্রতিটি পেশায় একাধিক ট্রেড ইউনিয়ন বিদ্যমান থাকায় একজন শ্রমিকের পছন্দ হল তার পেশায় যেকোনো ট্রেড ইউনিয়নে যোগদান করা। ২০০৬ সালের জুনে, বাকাসি উপদ্বীপের একটি আঞ্চলিক বিরোধের বিষয়ে আলোচনার সমাধান করা হয়েছিল। আলোচনায় ক্যামেরুনের রাষ্ট্রপতি পল বিয়া, নাইজেরিয়ার তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ওলুসেগুন ওবাসাঞ্জো এবং তৎকালীন জাতিসংঘের মহাসচিব কফি আনান জড়িত ছিলেন এবং এর ফলে তেল সমৃদ্ধ উপদ্বীপ ক্যামেরুনিয়ান নিয়ন্ত্রণে আসে। আগস্ট ২০০৬ সালে ভূখণ্ডের উত্তর অংশ আনুষ্ঠানিকভাবে ক্যামেরুনিয়ান সরকারের কাছে হস্তান্তর করা হয় এবং উপদ্বীপের অবশিষ্টাংশ ২ বছর পরে, ২০০৮ সালে ক্যামেরুনের হাতে ছেড়ে দেওয়া হয়। সীমানা পরিবর্তন স্থানীয় বিচ্ছিন্নতাবাদী বিদ্রোহের সূত্রপাত করে, কারণ অনেক বাকাসিয়ান ক্যামেরুনের শাসন মেনে নিতে অস্বীকার করেছিল। যদিও বেশিরভাগ সংগ্রামী ২০০৯ সালের নভেম্বরে তাদের অস্ত্র জমা দিয়েছিল, কেউ কেউ বছরের পর বছর ধরে যুদ্ধ চালিয়েছিল। ফেব্রুয়ারী ২০০৮ সালে, ক্যামেরুন ১৫ বছরের মধ্যে সবচেয়ে খারাপ সহিংসতার সম্মুখীন হয় যখন ডুয়ালায় একটি পরিবহন ইউনিয়ন ধর্মঘট ৩১টি পৌর এলাকায় সহিংস বিক্ষোভে পরিণত হয়। মে ২০১৪ সালে, চিবোক স্কুল ছাত্রী অপহরণের প্রেক্ষিতে, ক্যামেরুনের প্রেসিডেন্ট পল বিয়া এবং চাদের ইদ্রিস ডেবি ঘোষণা করেন যে তারা বোকো হারামের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালাচ্ছেন এবং নাইজেরিয়ার সীমান্তে সেনা মোতায়েন করেছেন। বোকো হারাম ক্যামেরুনে বেশ কয়েকটি আক্রমণ চালায়, ২০১৪ সালের ডিসেম্বরে একটি অভিযানে ৮৪ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করে, কিন্তু জানুয়ারী ২০১৫ সালে একটি অভিযানে ব্যাপক পরাজয়ের সম্মুখীন হয়। ক্যামেরুন ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ক্যামেরুনীয় অঞ্চলে বোকো হারামের বিরুদ্ধে বিজয় ঘোষণা করে। ২০১৬ সালের নভেম্বর থেকে, দেশের প্রধানত ইংরেজি-ভাষী উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলের প্রতিবাদকারীরা স্কুল এবং আদালতে ইংরেজি ভাষার অব্যাহত ব্যবহারের জন্য প্রচারণা চালাচ্ছে। এই বিক্ষোভের ফলে মানুষ নিহত হয় এবং শত শত জেলে যায়। ২০১৭ সালে, বিয়ার সরকার তিন মাসের জন্য অঞ্চলগুলির ইন্টারনেট সেবা বন্ধ করেছিল। সেপ্টেম্বরে, বিচ্ছিন্নতাবাদীরা অ্যাম্বাজোনিয়া ফেডারেল রিপাবলিক হিসাবে অ্যাংলোফোন অঞ্চলের স্বাধীনতার জন্য গেরিলা যুদ্ধ শুরু করে। সরকার সামরিক আক্রমণের মাধ্যমে তার জবাব দেয়, এবং বিদ্রোহ উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চল জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে। ২০১৯ সাল পর্যন্ত, বিচ্ছিন্নতাবাদী গেরিলা এবং সরকারি বাহিনীর মধ্যে লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ২০২০-এর সময়, অসংখ্য সন্ত্রাসী হামলা-যার মধ্যে অনেকগুলিই কৃতিত্বের দাবি ছাড়াই সম্পাদিত হয়েছিল-এবং সরকারী প্রতিশোধ সারা দেশে রক্তপাত ঘটিয়েছে। ২০১৬ সাল থেকে, ৪৫০,০০০ এরও বেশি মানুষ তাদের বাড়ি ছেড়ে পালিয়েছে। সংঘাতটি পরোক্ষভাবে বোকো হারামের আক্রমণে একটি উত্থানের দিকে পরিচালিত করে, কারণ ক্যামেরুনের সামরিক বাহিনী মূলত আম্বাজোনিয়ান বিচ্ছিন্নতাবাদীদের বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য উত্তর দিক থেকে প্রত্যাহার করে নেয়া হয়েছিল। ২০২১ সালের ডিসেম্বরে মুসগুম জেলে এবং জাতিগত আরব চোয়া পশুপালকদের মধ্যে জলের প্রবেশাধিকার নিয়ে জাতিগত সংঘর্ষের পর উত্তর ক্যামেরুনের ৩০,০০০ জনেরও বেশি মানুষ চাদে পালিয়ে যায়। রাজনীতি ও সরকার ক্যামেরুনের রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন এবং নীতিমালা তৈরি করেন, সরকারী সংস্থাগুলি পরিচালনা করেন, সশস্ত্র বাহিনীকে নির্দেশ দেন, আলোচনা করেন এবং চুক্তি অনুমোদন করেন এবং জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেন। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী থেকে শুরু করে প্রাদেশিক গভর্নর এবং বিভাগীয় কর্মকর্তাদের সকল স্তরে সরকারী কর্মকর্তাদের নিয়োগ করেন। প্রতি সাত বছর পর পর জনগণের ভোটে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ক্যামেরুনের স্বাধীনতার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২ জন রাষ্ট্রপতি রয়েছেন। জাতীয় পরিষদ আইন প্রণয়ন করে। সংস্থাটি ১৮০ জন সদস্য নিয়ে গঠিত যারা পাঁচ বছরের মেয়াদের জন্য নির্বাচিত হয় এবং বছরে তিনবার সম্মিলিত হয়। আইন সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটে পাস হয়। ১৯৯৬ সালের সংবিধান পার্লামেন্টের সেকেন্ড হাউস, এবং ১০০ আসনের সিনেট প্রতিষ্ঠা করে। সরকার ঐতিহ্যবাহী প্রধান, ফন এবং লামিবের কর্তৃত্বকে স্বীকৃতি দেয় স্থানীয় পর্যায়ে শাসন করার এবং বিরোধ নিষ্পত্তির জন্য যতক্ষণ না এই ধরনের রায়গুলি জাতীয় আইনের সাথে সাংঘর্ষিক না হয়। ক্যামেরুনের আইনি ব্যবস্থা হল দেওয়ানি আইন, সাধারণ আইন এবং প্রথাগত আইনের মিশ্রণ। নামমাত্র স্বাধীন হলেও, বিচার বিভাগ নির্বাহী বিভাগের বিচার মন্ত্রণালয়ের কর্তৃত্বের অধীনে পড়ে। রাষ্ট্রপতি সকল স্তরে বিচারক নিয়োগ করেন। বিচার বিভাগ আনুষ্ঠানিকভাবে ট্রাইব্যুনাল, আপিল আদালত এবং সর্বোচ্চ আদালতে বিভক্ত। ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি ৯-সদস্যের হাইকোর্ট অফ জাস্টিস সদস্যদের নির্বাচন করে যারা সরকারের উচ্চপদস্থ সদস্যদের বিচার করে যদি তারা উচ্চ রাষ্ট্রদ্রোহিতা বা জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষতির অভিযোগে অভিযুক্ত হয়। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ক্যামেরুনকে সরকারের সকল স্তরে দুর্নীতিতে ভরপুর বলে মনে করা হয়। ১৯৯৭ সালে, ক্যামেরুন ২৯টি মন্ত্রণালয়ে দুর্নীতি দমন ব্যুরো প্রতিষ্ঠা করে, কিন্তু মাত্র ২৫% চালু হয়, এবং ২০১২ সালে, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ১৭৬টি দেশের তালিকায় ক্যামেরুনকে ১৪৪ নম্বরে রাখে। ১৮ জানুয়ারী ২০০৬-এ, বিয়া ন্যাশনাল অ্যান্টি-করাপশন অবজারভেটরির নির্দেশনায় একটি দুর্নীতিবিরোধী অভিযান শুরু করে। ক্যামেরুনে বেশ কিছু উচ্চ দুর্নীতির ঝুঁকি রয়েছে, উদাহরণস্বরূপ, কাস্টমস, জনস্বাস্থ্য খাত এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট। যাইহোক, বিদ্যমান দুর্নীতি দমন ব্যুরো নির্বিশেষে দুর্নীতি আরও খারাপ হয়েছে, কারণ ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল ২০১৮ সালে ১৮০টি দেশের তালিকায় ক্যামেরুনকে ১৫২ তম স্থান দিয়েছে। প্রেসিডেন্ট বিয়ার ক্যামেরুন পিপলস ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (সিপিডিএম) ছিল একমাত্র আইনি রাজনৈতিক দল ১৯৯০ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত। এরপর থেকে অসংখ্য আঞ্চলিক রাজনৈতিক দল গঠিত হয়েছে। প্রধান বিরোধী দল হল সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (SDF), যেটি মূলত দেশের অ্যাংলোফোন অঞ্চলে এবং নেতৃত্বে আছে জন ফ্রু এনডি। বিয়া এবং তার দল জাতীয় নির্বাচনে রাষ্ট্রপতি এবং জাতীয় পরিষদের নিয়ন্ত্রণ বজায় রেখেছে, যা প্রতিদ্বন্দ্বীতা ছিল বিতর্কিত। মানবাধিকার সংস্থাগুলি অভিযোগ করে যে সরকার বিক্ষোভ প্রতিরোধ, সভা ব্যাহত করে এবং বিরোধী নেতা ও সাংবাদিকদের গ্রেপ্তার করে বিরোধী দলগুলির স্বাধীনতাকে দমন করে। বিশেষ করে, ইংরেজিভাষী মানুষদের প্রতি বৈষম্য করা হয়; বিক্ষোভ প্রায়ই সহিংস সংঘর্ষ ও হত্যাকাণ্ডে পরিণত হয়। ২০১৭ সালে, রাষ্ট্রপতি বিয়া সিলিকন মাউন্টেন স্টার্টআপ সহ পাঁচ মিলিয়ন লোককে বাধা দেওয়ার জন্য ৯৪ দিনের জন্য ইংরেজি-ভাষী অঞ্চলে ইন্টারনেট বন্ধ করে দেন। ফ্রিডম হাউস রাজনৈতিক অধিকার এবং নাগরিক স্বাধীনতার পরিপ্রেক্ষিতে ক্যামেরুনকে "মুক্ত নয়" হিসাবে স্থান দিয়েছে। সর্বশেষ জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২০২০ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। বিদেশী সম্পর্ক ক্যামেরুন কমনওয়েলথ অফ নেশনস এবং লা ফ্রাঙ্কোফোনি উভয়েরই সদস্য। এর পররাষ্ট্রনীতি ঘনিষ্ঠভাবে তার প্রধান মিত্র ফ্রান্সের (এর প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শাসকদের একজন) অনুসরণ করে। ক্যামেরুন তার প্রতিরক্ষার জন্য ফ্রান্সের উপর অনেক বেশি নির্ভর করে, যদিও সামরিক ব্যয় সরকারের অন্যান্য খাতের তুলনায় বেশি। রাষ্ট্রপতি বিয়া তেল সমৃদ্ধ বাকাসি উপদ্বীপের দখল নিয়ে নাইজেরিয়ার সরকারের সাথে এক দশক ধরে সংঘর্ষে লিপ্ত হয়েছেন। ক্যামেরুন এবং নাইজেরিয়া ১,০০০-মাইল (১,৬০০ কিমি) সীমান্ত ভাগ করে এবং বাকাসি উপদ্বীপের সার্বভৌমত্ব নিয়ে বিতর্ক করেছে। ১৯৯৪ সালে ক্যামেরুন বিরোধ সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে আবেদন করেছিল। দুই দেশ ১৯৯৬ সালে যুদ্ধবিরতি প্রতিষ্ঠার চেষ্টা করেছিল; যাইহোক, যুদ্ধ চলতে থাকে বছর ধরে। ২০০২ সালে, আইসিজে রায় দেয় যে ১৯১৩ সালের অ্যাংলো-জার্মান চুক্তি ক্যামেরুনকে সার্বভৌমত্ব দিয়েছে। রায়ে উভয় দেশই প্রত্যাহারের আহ্বান জানায় এবং নাইজেরিয়ার দীর্ঘমেয়াদী দখলের কারণে ক্ষতিপূরণের জন্য ক্যামেরুনের অনুরোধ প্রত্যাখ্যান করে। ২০০৪ সালের মধ্যে, নাইজেরিয়া উপদ্বীপ হস্তান্তর করার সময়সীমা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছিল। ২০০৬-এর জুনে জাতিসংঘ-মধ্যস্থিত শীর্ষ সম্মেলন নাইজেরিয়ার জন্য এই অঞ্চল থেকে প্রত্যাহার করার জন্য একটি চুক্তির সুবিধা দেয় এবং উভয় নেতা গ্রিনট্রি চুক্তিতে স্বাক্ষর করেন। প্রত্যাহার এবং নিয়ন্ত্রণ হস্তান্তর আগস্ট ২০০৬ দ্বারা সম্পন্ন হয়। জুলাই ২০১৯ সালে, ক্যামেরুন সহ ৩৭ টি দেশের রাষ্ট্রদূতরা ইউএনএইচআরসিতে জিনজিয়াং অঞ্চলে উইঘুরদের প্রতি চীনের আচরণের পক্ষে একটি যৌথ চিঠিতে স্বাক্ষর করেছিলেন। সামরিক ক্যামেরুন সশস্ত্র বাহিনী (ফরাসি: Forces armées camerounaises, FAC) দেশটির সেনাবাহিনী (Armée de Terre), দেশটির নৌবাহিনী (Marine Nationale de la République (MNR), নৌ-পদাতিক সৈন্যসহ ), ক্যামেরুনিয়ান বিমান বাহিনী (Armée de l'Air du Cameroun, AAC), এবং জন্দারমেরি নিয়ে গঠিত। ১৮ বছর থেকে ২৩ বছর বয়স পর্যন্ত বয়সী পুরুষ এবং মহিলারা এবং উচ্চ বিদ্যালয়ে স্নাতক হয়েছে তারা সামরিক চাকরির জন্য যোগ্য হন। যারা যোগদান করবেন তারা ৪ বছর চাকরি করতে বাধ্য। ক্যামেরুনে বাধ্যতামূলকভাবে সৈন্যদলে কোনো নিয়োগ নেই, তবে সরকার স্বেচ্ছাসেবকদের জন্য পর্যায়ক্রমে ডেকে থাকে। মানবাধিকার মানবাধিকার সংস্থাগুলি পুলিশ এবং সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে সন্দেহভাজন অপরাধী, জাতিগত সংখ্যালঘু, সমকামী, এবং রাজনৈতিক কর্মীদের সাথে দুর্ব্যবহার এবং এমনকি নির্যাতনের অভিযোগ এনেছে। জাতিসংঘের পরিসংখ্যান ইঙ্গিত করে যে ২১,০০০ জনেরও বেশি মানুষ প্রতিবেশী দেশগুলিতে পালিয়ে গেছে, যখন ১৬০,০০০ জন অভ্যন্তরীণভাবে সহিংসতার কারণে বাস্তুচ্যুত হয়েছে, অনেকে বনে লুকিয়ে আছে বলে জানা গেছে। কারাগারগুলি পর্যাপ্ত খাবার এবং সামান্য চিকিৎসা সুবিধার জন্যে ভিড় করে, এবং উত্তরের ঐতিহ্যবাহী শাসকদের দ্বারা পরিচালিত কারাগারগুলিকে সরকারের নির্দেশে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ধরে রাখার অভিযোগ আনা হয়। যাইহোক, ২১ শতকের প্রথম দশক থেকে, অনুপযুক্ত আচরণের জন্য ক্রমবর্ধমান সংখ্যক পুলিশ এবং জেন্ডারমের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। ২৫ জুলাই ২০১৮-এ, জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার জেইদ রাদ আল হুসেন ক্যামেরুনের ইংরেজি-ভাষী উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম অঞ্চলে লঙ্ঘন এবং নির্যাতনের রিপোর্ট সম্পর্কে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। দণ্ডবিধির ধারা ৩৪৭-১ দ্বারা সমলিঙ্গের যৌন ক্রিয়াকলাপ নিষিদ্ধ করা হয়েছে যার শাস্তি ৬ মাস থেকে ৫ বছরের কারাদণ্ড। ২০২০ সালের ডিসেম্বর থেকে, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ দাবি করেছে যে ইসলামপন্থী সশস্ত্র গোষ্ঠী বোকো হারাম ক্যামেরুনের সুদূর উত্তর অঞ্চলের শহর ও গ্রামে কমপক্ষে ৮০ জন বেসামরিক লোককে হত্যা করেছে এবং হামলা বাড়িয়েছে। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ সংবিধান ক্যামেরুনকে ১০টি আধা-স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলে বিভক্ত করেছে, প্রতিটি নির্বাচিত আঞ্চলিক পরিষদের প্রশাসনের অধীনে। প্রতিটি অঞ্চলের নেতৃত্বে একজন রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত গভর্নর। এই নেতাদের রাষ্ট্রপতির ইচ্ছা বাস্তবায়ন, অঞ্চলগুলির সাধারণ মেজাজ এবং অবস্থার বিষয়ে রিপোর্ট করা, সিভিল সার্ভিস পরিচালনা করা, শান্তি বজায় রাখা এবং ছোট প্রশাসনিক ইউনিটগুলির প্রধানদের তত্ত্বাবধান করার জন্য অভিযুক্ত করা হয়। গভর্নরদের ব্যাপক ক্ষমতা রয়েছে: তারা তাদের এলাকায় প্রচারের আদেশ দিতে পারে এবং সেনাবাহিনী, জেন্ডারমেস এবং পুলিশকে ডাকতে পারে। সমস্ত স্থানীয় সরকারী কর্মকর্তারা কেন্দ্রীয় সরকারের আঞ্চলিক প্রশাসন মন্ত্রণালয়ের কর্মচারী, যেখান থেকে স্থানীয় সরকারগুলিও তাদের বাজেটের বেশির ভাগ পায়। অঞ্চলগুলি ৫৮টি বিভাগে (ফরাসি বিভাগ) উপবিভক্ত। এগুলির নেতৃত্বে রাষ্ট্রপতি নিযুক্ত বিভাগীয় কর্মকর্তারা (প্রেফেট)। বিভাগগুলিকে আরও উপ-বিভাগে বিভক্ত করা হয়েছে (অ্যারনডিসেমেন্ট), যার নেতৃত্বে সহকারী বিভাগীয় কর্মকর্তারা (সাস-প্রিফেট)। জেলাগুলি, জেলা প্রধানদের দ্বারা পরিচালিত হয় (শেফ ডি ডিস্ট্রিক্ট), হল ক্ষুদ্রতম প্রশাসনিক ইউনিট। তিনটি উত্তরের অঞ্চল হল সুদূর উত্তর (এক্সট্রিম নর্ড), উত্তর (নর্ড), এবং আদামাওয়া (আদামাউয়া)। তাদের সরাসরি দক্ষিণে কেন্দ্র (কেন্দ্র) এবং পূর্ব (Est)। দক্ষিণ প্রদেশ (সুদ) গিনি উপসাগর এবং দক্ষিণ সীমান্তে অবস্থিত। ক্যামেরুনের পশ্চিম অঞ্চলটি চারটি ছোট অঞ্চলে বিভক্ত: লিটোরাল (লিটোরাল) এবং দক্ষিণ-পশ্চিম (সুদ-আউয়েস্ট) অঞ্চলগুলি উপকূলে রয়েছে এবং উত্তর-পশ্চিম (নর্ড-আউয়েস্ট) এবং পশ্চিম (উয়েস্ট) অঞ্চলগুলি পশ্চিমে রয়েছে। ঘাসক্ষেত্র ভূগোল ৪৭৫,৪৪২ বর্গ কিলোমিটার (১৮৩,৫৬৯ বর্গ মাইল), ক্যামেরুন বিশ্বের ৫৩তম বৃহত্তম দেশ। দেশটি মধ্য ও পশ্চিম আফ্রিকায় অবস্থিত, যা আফ্রিকার কব্জা হিসাবে পরিচিত, বনির বাইট, গিনি উপসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরের অংশে। ক্যামেরুন ১° এবং ১৩°N অক্ষাংশ এবং ৮° এবং ১৭°E দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। ক্যামেরুন আটলান্টিক মহাসাগরের ১২ নটিক্যাল মাইল নিয়ন্ত্রণ করে। পর্যটন সাহিত্য ক্যামেরুনকে "মিনি আফ্রিকা" হিসাবে বর্ণনা করে কারণ এটিতে মহাদেশের সমস্ত প্রধান জলবায়ু এবং গাছপালা উপকূল, মরুভূমি, পর্বতমালা, রেইনফরেস্ট এবং সাভানা দেখা যায়। দেশটির প্রতিবেশী হল নাইজেরিয়া এবং পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর; উত্তর-পূর্বে চাদ; পূর্বে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র; এবং দক্ষিণে নিরক্ষীয় গিনি, গ্যাবন এবং কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। ক্যামেরুনকে পাঁচটি প্রধান ভৌগোলিক অঞ্চলে বিভক্ত করা হয়েছে যা প্রভাবশালী শারীরিক, জলবায়ু এবং উদ্ভিজ্জ বৈশিষ্ট্য দ্বারা আলাদা। উপকূলীয় সমভূমি গিনি উপসাগর থেকে ১৫ থেকে ১৫০ কিলোমিটার (৯ থেকে ৯৩ মাইল) অভ্যন্তরীণ বিস্তৃতি এবং গড় উচ্চতা ৯০ মিটার (২৯৫ ফুট)। একটি ছোট শুষ্ক মৌসুমের সাথে অত্যন্ত গরম এবং আর্দ্র, এই বেল্টটি ঘন বনভূমি এবং পৃথিবীর কিছু আর্দ্র স্থান, ক্রস-সানাগা-বায়োকো উপকূলীয় বনের অংশ অন্তর্ভুক্ত করে দক্ষিণ ক্যামেরুন মালভূমি উপকূলীয় সমভূমি থেকে গড়ে ৬৫০ মিটার (২,১৩৩ ফুট) উচ্চতায় উঠেছে। নিরক্ষীয় রেইনফরেস্ট এই অঞ্চলে আধিপত্য বিস্তার করে, যদিও আর্দ্র এবং শুষ্ক ঋতুর মধ্যে এটির পরিবর্তন উপকূলের তুলনায় কম আর্দ্র করে তোলে। এই এলাকা আটলান্টিক নিরক্ষীয় উপকূলীয় বন ইকোরিজিয়নের অংশ। ক্যামেরুন রেঞ্জ নামে পরিচিত পর্বত, পাহাড় এবং মালভূমির একটি অনিয়মিত শৃঙ্খল উপকূলে ক্যামেরুন পর্বত থেকে বিস্তৃত - ক্যামেরুনের সর্বোচ্চ বিন্দু ৪,০৯৫ মিটার (১৩,৪৩৫ ফুট) - প্রায় ক্যামেরুনের উত্তর সীমান্তে চাদ লেক পর্যন্ত ১৩০° এন. এই অঞ্চলে হালকা জলবায়ু রয়েছে, বিশেষ করে পশ্চিম উচ্চ মালভূমিতে, যদিও বৃষ্টিপাত বেশি। এর মাটি ক্যামেরুনের সবচেয়ে উর্বর, বিশেষ করে আগ্নেয়গিরির মাউন্ট ক্যামেরুনের চারপাশে। এখানে আগ্নেয়গিরির কারণে ক্রেটার লেক তৈরি হয়েছে। ২১ আগস্ট ১৯৮৬, এর মধ্যে একটি, লেক নিওস, কার্বন ডাই অক্সাইড ঢেলে দেয় এবং ১,৭০০ থেকে ২,০০০ জনের মধ্যে মারা যায়। এই এলাকাটিকে ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড দ্বারা ক্যামেরুনিয়ান হাইল্যান্ডস বন ইকোরিজিয়ন হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। দক্ষিণ মালভূমি উত্তর দিকে ঘাসযুক্ত, রুক্ষ আদামাওয়া মালভূমিতে উঠে গেছে। এই বৈশিষ্ট্যটি পশ্চিম পর্বত এলাকা থেকে প্রসারিত এবং দেশের উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে একটি বাধা তৈরি করে। এর গড় উচ্চতা হল ১,১০০ মিটার (৩,৬০৯ ফুট), এবং এর গড় তাপমাত্রা ২২ °C (৭১.৬ °F) থেকে ২৫ °C (৭৭ °F) এবং এপ্রিল এবং অক্টোবরের মধ্যে উচ্চ বৃষ্টিপাত জুলাই এবং আগস্টে সর্বোচ্চ। উত্তরের নিম্নভূমি অঞ্চলটি আদামাওয়ার প্রান্ত থেকে চাদ হ্রদ পর্যন্ত ৩০০ থেকে ৩৫০ মিটার (৯৮৪ থেকে ১,১৪৮ ফুট) গড় উচ্চতায় বিস্তৃত। এর বৈশিষ্ট্যযুক্ত গাছপালা হল সাভানা স্ক্রাব এবং ঘাস। এটি বিরল বৃষ্টিপাত এবং উচ্চ মাঝারি তাপমাত্রা সহ একটি শুষ্ক অঞ্চল। ক্যামেরুনে পানি নিষ্কাশনের চারটি প্যাটার্ন রয়েছে। দক্ষিণে, প্রধান নদীগুলি হল এন্তেম , নিওং, সানাগা এবং ওরি। এগুলি সরাসরি গিনি উপসাগরে দক্ষিণ-পশ্চিম বা পশ্চিম দিকে প্রবাহিত হয়। দিজা এবং কাদেই দক্ষিণ-পূর্ব দিকে কঙ্গো নদীতে প্রবাহিত হয়। উত্তর ক্যামেরুনে, বেনু নদী উত্তর ও পশ্চিমে প্রবাহিত হয় এবং নাইজারে খালি হয়ে যায়। লগন উত্তর দিকে চাদ হ্রদে প্রবাহিত হয়, যা ক্যামেরুন তিনটি প্রতিবেশী দেশের সাথে ভাগ করে নেয় শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ২০১৩ সালে, ক্যামেরুনের মোট প্রাপ্তবয়স্ক সাক্ষরতার হার অনুমান করা হয়েছিল ৭১.৩%। ১৫-২৪ বছর বয়সী যুবকদের মধ্যে সাক্ষরতার হার ছিল পুরুষদের জন্য ৮৫.৪% এবং মহিলাদের জন্য ৭৬.৪%। বেশির ভাগ শিশুরই সরকারি স্কুলে প্রবেশাধিকার আছে যেগুলো বেসরকারি ও ধর্মীয় সুবিধার চেয়ে সস্তা। শিক্ষাব্যবস্থা হল ব্রিটিশ এবং ফরাসি নজিরগুলির মিশ্রণ ইংরেজি বা ফরাসি ভাষায় বেশিরভাগ নির্দেশনা। আফ্রিকার স্কুলে উপস্থিতির হার ক্যামেরুনের অন্যতম। সাংস্কৃতিক মনোভাব, গার্হস্থ্য কর্তব্য, বাল্যবিবাহ, গর্ভাবস্থা এবং যৌন হয়রানির কারণে মেয়েরা ছেলেদের তুলনায় কম নিয়মিত স্কুলে যায়। যদিও উপস্থিতির হার দক্ষিণে বেশি, সেখানে অপর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষকদের নিয়োগ করা হয়, যা উত্তরের স্কুলগুলিকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে কম কর্মী রেখে দেয়। ২০১৩ সালে, প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তির হার ছিল ৯৩.৫%। ক্যামেরুনে স্কুলে উপস্থিতিও শিশু শ্রম দ্বারা প্রভাবিত হয়। প্রকৃতপক্ষে, ইউনাইটেড স্টেটস ডিপার্টমেন্ট অফ লেবার ফাইন্ডিংস অব দ্য ওয়ার্স্ট ফরম অব চাইল্ড লেবার রিপোর্ট করেছে যে ৫ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের ৫৬% শ্রমজীবী ​​শিশু এবং ৭ থেকে ১৪ বছর বয়সী শিশুদের প্রায় ৫৩% মিলিত কাজ এবং স্কুল। ডিসেম্বর ২০১৪ সালে, আন্তর্জাতিক শ্রম বিষয়ক ব্যুরো দ্বারা তৈরি করা "শিশু শ্রম বা জোরপূর্বক শ্রম দ্বারা উত্পাদিত পণ্য" এর একটি তালিকায় কোকো উৎপাদনে শিশুশ্রমের আশ্রয় নেওয়া দেশগুলির মধ্যে ক্যামেরুনকে উল্লেখ করা হয়েছে। স্বাস্থ্যসেবার মান সাধারণত কম। জন্মের সময় আয়ু ২০১২ সালে ৫৬ বছর অনুমান করা হয়, ৪৮ সুস্থ জীবন বছর প্রত্যাশিত। ক্যামেরুনে উর্বরতার হার উচ্চ রয়ে গেছে যেখানে প্রতি মহিলার গড় ৪.৮ জন্ম এবং প্রথম জন্মের সময় একজন মায়ের গড় বয়স ১৯.৭ বছর। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে ক্যামেরুনে প্রতি ৫,০০০ জন মানুষের জন্য মাত্র একজন ডাক্তার আছে। ২০১৪ সালে, মোট জিডিপি ব্যয়ের মাত্র ৪.১% স্বাস্থ্যসেবাতে বরাদ্দ করা হয়েছিল। স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থায় আর্থিক হ্রাসের কারণে, অল্প সংখ্যক পেশাদার রয়েছে। ক্যামেরুনে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত ডাক্তার এবং নার্সরা দেশত্যাগ করেন কারণ ক্যামেরুনে কাজের চাপ বেশি থাকলেও অর্থ প্রদানের পরিমাণ কম। তাদের সাহায্যের প্রয়োজন হলেও নার্সরা বেকার। তাদের মধ্যে কিছু স্বেচ্ছায় সাহায্য করে যাতে তারা তাদের দক্ষতা হারাতে না পারে। প্রধান শহরগুলির বাইরের অংশে, সুযোগ-সুবিধাগুলি প্রায়ই নোংরা এবং দুর্বলভাবে গোছানো হয়। ২০১২ সালে, শীর্ষ তিনটি মারাত্মক রোগ ছিল এইচআইভি/এইডস, নিম্ন শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ, এবং ডায়রিয়াজনিত রোগ। স্থানীয় রোগের মধ্যে রয়েছে ডেঙ্গু জ্বর, ফাইলেরিয়াসিস, লেশম্যানিয়াসিস, ম্যালেরিয়া, মেনিনজাইটিস, স্কিস্টোসোমিয়াসিস, এবং ঘুমের অসুস্থতা। ২০১৬ সালে এইচআইভি/এইডস প্রাদুর্ভাবের হার ১৫-৪৯ বছর বয়সীদের জন্য ৩.৮% অনুমান করা হয়েছিল, যদিও অসুস্থতার বিরুদ্ধে একটি শক্তিশালী কলঙ্ক কৃত্রিমভাবে কম রিপোর্ট করা মামলার সংখ্যা রাখে। ২০১৬ সালে ১৪ বছরের কম বয়সী ৪৬,০০০ শিশু এইচআইভিতে বসবাস করছে বলে অনুমান করা হয়েছিল। ক্যামেরুনে, ৫৮% যারা এইচআইভিতে আক্রান্ত তাদের অবস্থা জানেন এবং মাত্র ৩৭% এআরভি চিকিত্সা পান। ২০১৬ সালে, ২৯,০০০ এইডসের কারণে প্রাপ্তবয়স্ক এবং শিশু উভয়ের মৃত্যু ঘটেছে। স্তন চ্যাপ্টা করা, একটি ঐতিহ্যগত অভ্যাস যা ক্যামেরুনে প্রচলিত, এটি মেয়েদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করতে পারে। ফিমেল জেনিটাল মিটিলেশন (FGM), যদিও ব্যাপক নয়, কিছু জনগোষ্ঠীর মধ্যে চর্চা করা হয়; ২০১৩ এর একটি ইউনিসেফ রিপোর্ট অনুযায়ী, ক্যামেরুনের ১% মহিলা ফিমেল জেনিটাল মিটিলেশন এর মধ্য দিয়ে গেছে। এছাড়াও ২০১৪ সালে মহিলাদের এবং মেয়েদের স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে, গর্ভনিরোধক প্রাদুর্ভাবের হার অনুমান করা হয়েছে মাত্র ৩৪.৪%। ঐতিহ্যগত নিরাময়কারীরা প্রমাণ-ভিত্তিক ওষুধের একটি জনপ্রিয় বিকল্প হিসাবে রয়ে গেছে। অর্থনীতি এবং অবকাঠামো ২০১৭ সালে ক্যামেরুনের মাথাপিছু জিডিপি (ক্রয় ক্ষমতা সমতা) অনুমান করা হয়েছিল ইউএস $৩,৭০০। প্রধান রপ্তানি বাজারের মধ্যে রয়েছে নেদারল্যান্ডস, ফ্রান্স, চীন, বেলজিয়াম, ইতালি, আলজেরিয়া এবং মালয়েশিয়া। ক্যামেরুনের এক দশক শক্তিশালী অর্থনৈতিক কর্মক্ষমতা রয়েছে, যেখানে প্রতি বছর গড়ে ৪% হারে জিডিপি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ক্যামেরুন হল ব্যাংক অফ সেন্ট্রাল আফ্রিকান স্টেটস (যার মধ্যে এটি প্রভাবশালী অর্থনীতি), সেন্ট্রাল আফ্রিকার কাস্টমস অ্যান্ড ইকোনমিক ইউনিয়ন (UDEAC) এবং অর্গানাইজেশন ফর দ্য হারমোনাইজেশন অফ বিজনেস ল ইন আফ্রিকা (OHADA)। এর মুদ্রা হল সিএফএ ফ্রাঙ্ক। ২০১৯ সালে বেকারত্ব ৩.৩৮% এ অনুমান করা হয়েছিল, এবং ২৩.৮% জনসংখ্যা ২০১৪ সালে প্রতিদিন ইউএস $১.৯০ এর আন্তর্জাতিক দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করছিলেন। ১৯৮০ এর দশকের শেষের দিক থেকে, ক্যামেরুন দারিদ্র্য হ্রাস, শিল্প বেসরকারিকরণ, এবং অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধির জন্য বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (IMF) দ্বারা প্রস্তাবিত কর্মসূচি অনুসরণ করছে। দেশে পর্যটনকে উৎসাহিত করার জন্য সরকার ব্যবস্থা নিয়েছে। আনুমানিক ৭০% জনসংখ্যা খামার, এবং কৃষি ২০১৭ সালে জিডিপির আনুমানিক ১৬.৭% নিয়ে গঠিত। স্থানীয় কৃষকরা সাধারণ হাতিয়ার ব্যবহার করে জীবিকা নির্বাহের স্কেলে বেশিরভাগ কৃষিকাজ করেন। তারা তাদের উদ্বৃত্ত পণ্য বিক্রি করে এবং কেউ কেউ বাণিজ্যিক ব্যবহারের জন্য আলাদা ক্ষেত্র বজায় রাখে। শহুরে কেন্দ্রগুলি তাদের খাদ্য সামগ্রীর জন্য কৃষকদের কৃষির উপর বিশেষভাবে নির্ভরশীল। উপকূলের মাটি এবং জলবায়ু কলা, কোকো, তেল পাম, রাবার এবং চায়ের ব্যাপক বাণিজ্যিক চাষকে উৎসাহিত করে। দক্ষিণ ক্যামেরুন মালভূমিতে অভ্যন্তরীণ অর্থকরী ফসলের মধ্যে রয়েছে কফি, চিনি এবং তামাক। কফি পশ্চিমের উচ্চভূমিতে একটি প্রধান অর্থকরী ফসল এবং উত্তরে, প্রাকৃতিক অবস্থা তুলা, চীনাবাদাম এবং ধানের মতো ফসলের অনুকূল। ফেয়ারট্রেড তুলা উৎপাদন ২০০৪ সালে ক্যামেরুনে শুরু হয়েছিল। সারা দেশে পশুসম্পদ উত্থাপিত হয়। মাছ ধরা ৫,০০০ লোক নিয়োগ করে এবং প্রতি বছর ১০০,০০০ টন সামুদ্রিক খাবার সরবরাহ করে। বুশমিট, দীর্ঘদিন ধরে গ্রামীণ ক্যামেরুনবাসীদের প্রধান খাদ্য, আজকে দেশের শহুরে কেন্দ্রগুলিতে একটি সুস্বাদু খাবার। দক্ষিণাঞ্চলীয় রেইনফরেস্টে বিশাল কাঠের মজুদ রয়েছে, যা ক্যামেরুনের মোট ভূমি এলাকার ৩৭% কভার করে। তবে, বনের বিশাল এলাকায় পৌঁছানো কঠিন। লগিং, মূলত বিদেশী মালিকানাধীন সংস্থাগুলি দ্বারা পরিচালিত হয়, সরকারকে বছরে ৬০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ট্যাক্স প্রদান করে (১৯৯৮ অনুযায়ী), এবং আইনগুলি কাঠের নিরাপদ এবং টেকসই শোষণকে বাধ্যতামূলক করে। তা সত্ত্বেও, বাস্তবে, ক্যামেরুনে সবচেয়ে কম নিয়ন্ত্রিত একটি হল শিল্প । কারখানা ভিত্তিক শিল্প ২০১৭ সালে জিডিপির আনুমানিক ২৬.৫% জন্য দায়ী। ক্যামেরুনের শিল্প শক্তির ৭৫% এরও বেশি ডুয়ালা এবং বোনাবেরিতে অবস্থিত। ক্যামেরুনে যথেষ্ট পরিমাণে খনিজ সম্পদ রয়েছে, কিন্তু এগুলো ব্যাপকভাবে খনন করা হয় না (ক্যামেরুনে খনির কাজ দেখুন)। ১৯৮৬ সাল থেকে পেট্রোলিয়াম শোষণ হ্রাস পেয়েছে, তবে এটি এখনও একটি উল্লেখযোগ্য খাত যে দামের হ্রাস অর্থনীতিতে একটি শক্তিশালী প্রভাব ফেলে। নদীপ্রপাত এবং জলপ্রপাতগুলি দক্ষিণের নদীগুলিকে বাধা দেয়, তবে এই সাইটগুলি জলবিদ্যুৎ বিকাশের সুযোগ দেয় এবং ক্যামেরুনের বেশিরভাগ শক্তি সরবরাহ করে। সানাগা নদী সবচেয়ে বড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রকে শক্তি দেয়, এটি এডেতে অবস্থিত। ক্যামেরুনের বাকি শক্তি তেল চালিত তাপ ইঞ্জিন থেকে আসে। দেশের বেশিরভাগ নির্ভরযোগ্য বিদ্যুৎ সরবরাহ ছাড়াই রয়ে গেছে। ক্যামেরুনে পরিবহন প্রায়ই কঠিন। সড়কপথের মাত্র ৬.৬% পিচঢালা। রোডব্লকগুলি প্রায়ই যাত্রীদের কাছ থেকে ঘুষ সংগ্রহের জন্য পুলিশ এবং জেন্ডারমেদের অনুমতি দেওয়ার চেয়ে সামান্য অন্য উদ্দেশ্য পরিবেশন করে। সড়ক দস্যুতা দীর্ঘদিন ধরে পূর্ব ও পশ্চিম সীমান্তে পরিবহন ব্যাহত করেছে এবং ২০০৫ সাল থেকে, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র আরও অস্থিতিশীল হওয়ার কারণে পূর্বে সমস্যাটি তীব্র হয়েছে। একাধিক বেসরকারী কোম্পানি দ্বারা চালিত আন্তঃনগর বাস পরিষেবাগুলি সমস্ত প্রধান শহরকে সংযুক্ত করে। তারা রেল পরিষেবা ক্যামরাইল অনুসরণ করে পরিবহনের সবচেয়ে জনপ্রিয় মাধ্যম। রেল পরিষেবা পশ্চিমে কুম্বা থেকে পূর্বে বেলাবো পর্যন্ত এবং উত্তরে নগাউন্ডেরে পর্যন্ত চলে। আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর মারোয়া নির্মাণাধীন একটি তৃতীয় সঙ্গে, ডুয়ালা এবং ইয়াউন্ডে অবস্থিত. ডুয়ালা হল দেশের প্রধান সমুদ্রবন্দর উত্তরে, বেনোউ নদী ঋতু অনুসারে গারুয়া থেকে নাইজেরিয়ায় চলাচলের উপযোগী। যদিও ২১ শতকের প্রথম দশক থেকে সংবাদপত্রের স্বাধীনতার উন্নতি হয়েছে, সংবাদপত্র দুর্নীতিগ্রস্ত এবং বিশেষ স্বার্থ ও রাজনৈতিক গোষ্ঠীর দৃষ্টিতে দেখা যায়। সরকারী প্রতিহিংসা এড়াতে সংবাদপত্র নিয়মিতভাবে স্ব-সেন্সর করে। প্রধান রেডিও এবং টেলিভিশন স্টেশনগুলি হল রাষ্ট্র-চালিত এবং অন্যান্য যোগাযোগ, যেমন ভূমি-ভিত্তিক টেলিফোন এবং টেলিগ্রাফ, মূলত সরকারের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যাইহোক, সেল ফোন নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট প্রদানকারী ২১ শতকের প্রথম দশক থেকে নাটকীয়ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যা মূলত অনিয়ন্ত্রিত। জনসংখ্যা ২০১৮ সালে ক্যামেরুনের জনসংখ্যা ছিল ২৫,২১৬,২৬৭ জন। আয়ুষ্কাল ছিল ৬২.৩ বছর (পুরুষদের জন্য ৬০.৬ বছর এবং মহিলাদের জন্য ৬৪ বছর)। ক্যামেরুনে পুরুষদের (৪৯.৫%) তুলনায় কিছুটা বেশি নারী (৫০.৫%) রয়েছে। জনসংখ্যার ৬০% এরও বেশি বয়স ২৫ বছরের কম। ৬৫ বছরের বেশি বয়সী মানুষ মোট জনসংখ্যার মাত্র ৩.১১%। ক্যামেরুনের জনসংখ্যা প্রায় সমানভাবে শহুরে এবং গ্রামীণ বাসিন্দাদের মধ্যে বিভক্ত। জনসংখ্যার ঘনত্ব বৃহৎ নগর কেন্দ্র, পশ্চিম উচ্চভূমি এবং উত্তর-পূর্ব সমভূমিতে সর্বোচ্চ। ডুয়ালা, ইয়াউন্ডে এবং গারুয়া বৃহত্তম শহর। বিপরীতে, আদামাওয়া মালভূমি, দক্ষিণ-পূর্ব বেনোউ ডিপ্রেশন এবং দক্ষিণ ক্যামেরুন মালভূমির অধিকাংশই কম জনবসতিপূর্ণ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে, জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ২.৫৬% সহ ২০১৩ সালে উর্বরতার হার ছিল ৪.৮। অত্যধিক জনবহুল পশ্চিম উচ্চভূমি এবং অনুন্নত উত্তর থেকে মানুষ কর্মসংস্থানের জন্য উপকূলীয় বৃক্ষরোপণ অঞ্চল এবং নগর কেন্দ্রে চলে যাচ্ছে। ছোট আন্দোলন ঘটছে শ্রমিকরা লাম্বার মিল এবং দক্ষিণ এবং পূর্বে বাগানে কর্মসংস্থান খুঁজছেন. যদিও জাতীয় লিঙ্গ অনুপাত তুলনামূলকভাবে সমান, তবে এই বহিরাগতরা প্রাথমিকভাবে পুরুষ, যা কিছু অঞ্চলে ভারসাম্যহীন অনুপাতের দিকে পরিচালিত করে। একগামী এবং বহুগামী উভয় বিবাহই প্রচলিত, এবং গড়ে ক্যামেরুনিয়ান পরিবার বড় এবং বর্ধিত হয়। উত্তর অংশে, মহিলারা বাড়ির দিকে ঝোঁক, এবং পুরুষরা গবাদি পশু পালন করে বা কৃষক হিসাবে কাজ করে। দক্ষিণে, মহিলারা পরিবারের খাদ্য বাড়ায় এবং পুরুষরা মাংস সরবরাহ করে এবং অর্থকরী ফসল ফলায়। ক্যামেরুনিয়ান সমাজ পুরুষ-শাসিত, এবং মহিলাদের বিরুদ্ধে সহিংসতা এবং বৈষম্য সাধারণ। ক্যামেরুনে স্বতন্ত্র জাতিগত ও ভাষাগত গোষ্ঠীর সংখ্যা ২৩০ এবং ২৮২ এর মধ্যে অনুমান করা হয়। আদামাওয়া মালভূমি বিস্তৃতভাবে এগুলিকে উত্তর এবং দক্ষিণ বিভাগে বিভক্ত করেছে। উত্তরের জনগণ হল সুদানী গোষ্ঠী, যারা কেন্দ্রীয় উচ্চভূমি এবং উত্তর নিম্নভূমিতে বাস করে এবং ফুলানি, যারা উত্তর ক্যামেরুন জুড়ে বিস্তৃত। চাদ হ্রদের কাছে অল্প সংখ্যক শুওয়া আরব বাস করে। দক্ষিণ ক্যামেরুন বান্টু এবং সেমি-বান্টু ভাষার ভাষাভাষীদের দ্বারা অধ্যুষিত। বান্টু-ভাষী গোষ্ঠীগুলি উপকূলীয় এবং নিরক্ষীয় অঞ্চলে বাস করে, যখন আধা-বান্টু ভাষার ভাষাভাষীরা পশ্চিম ঘাসক্ষেত্রে বাস করে। প্রায় ৫,০০০ গেইল এবং বাকা পিগমি মানুষ দক্ষিণ-পূর্ব এবং উপকূলীয় রেইনফরেস্টে ঘোরাফেরা করে বা ছোট, রাস্তার পাশের বসতিতে বাস করে। নাইজেরিয়ানরা বিদেশী নাগরিকদের বৃহত্তম দল তৈরি করে। উদ্বাস্তু ২০০৭ সালে, ক্যামেরুন প্রায় ৯৭,৪০০ শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীকে আতিথ্য দিয়েছে। এর মধ্যে, ৪৯,৩০০ সেন্ট্রাল আফ্রিকান রিপাবলিক থেকে (অনেকগুলি যুদ্ধ দ্বারা পশ্চিমে চালিত), ৪১,৬০০ চাদ থেকে, এবং ২,৯০০ নাইজেরিয়া থেকে। সেন্ট্রাল আফ্রিকান দস্যুদের দ্বারা ক্যামেরুনিয়ান নাগরিকদের অপহরণ ২০০৫ সাল থেকে বেড়েছে। ২০১৪ সালের প্রথম মাসে, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের সহিংসতা থেকে পালিয়ে আসা হাজার হাজার শরণার্থী ক্যামেরুনে পৌঁছেছিল। ৪ জুন ২০১৪-এ, এলারটনেট রিপোর্ট করেছে: ডিসেম্বর থেকে প্রায় ৯০,০০০ মানুষ প্রতিবেশী ক্যামেরুনে পালিয়ে গেছে এবং সপ্তাহে ২,০০০ পর্যন্ত, যাদের বেশিরভাগই নারী ও শিশু, এখনও সীমান্ত অতিক্রম করছে, জাতিসংঘ বলেছে। ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রামের (ডব্লিউএফপি) নির্বাহী পরিচালক এরথারিন কাজিন বলেছেন, "মহিলা এবং শিশুরা কয়েক সপ্তাহ, কখনও কখনও মাস, রাস্তায়, খাবারের জন্য চড়ার জন্য একটি মর্মান্তিক অবস্থায় ক্যামেরুনে পৌঁছেছে।" ভাষা ইংরেজি এবং ফরাসি উভয়ই সরকারী ভাষা, যদিও ফরাসি এখন পর্যন্ত সবচেয়ে বেশি বোঝা ভাষা (৮০% এরও বেশি)। জার্মান, মূল ঔপনিবেশিকদের ভাষা, অনেক আগেই ফরাসি এবং ইংরেজি দ্বারা স্থানচ্যুত হয়েছে। ক্যামেরুনিয়ান পিডগিন ইংরেজি হল পূর্বে ব্রিটিশ-শাসিত অঞ্চলের লিংগুয়া ফ্রাঙ্কা। ইংরেজি, ফ্রেঞ্চ এবং পিডগিনের মিশ্রণ ক্যামফ্রাংলাইস নামক ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে নগর কেন্দ্রে জনপ্রিয়তা লাভ করছে। সরকার ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় দ্বিভাষিকতাকে উৎসাহিত করে, এবং যেমন, সরকারী সরকারি নথি, নতুন আইন, ব্যালট, অন্যদের মধ্যে, উভয় ভাষায় লিখিত এবং সরবরাহ করা হয়। ক্যামেরুনে দ্বিভাষিকতাকে উৎসাহিত করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে, দেশের আটটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ছয়টি সম্পূর্ণরূপে দ্বিভাষিক। ঔপনিবেশিক ভাষা ছাড়াও, প্রায় ২০ মিলিয়ন ক্যামেরুনিয়ানদের দ্বারা কথা বলা প্রায় ২৫০টি অন্যান্য ভাষা রয়েছে। এই কারণেই ক্যামেরুনকে বিশ্বের সবচেয়ে ভাষাগতভাবে বৈচিত্র্যময় দেশগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জার্মান ভাষার অধ্যয়নের জন্য জার্মানির সাথে অনেক সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হয়েছে, যা এখনও ছাত্রদের মধ্যে ব্যাপক জনপ্রিয়তা পায়, ২০১০ সালে ক্যামেরুনে ৩০০,০০০ লোক জার্মান ভাষা শিখে বা বলতে পারে৷ আজ, ক্যামেরুন আফ্রিকান দেশগুলির মধ্যে একটি যেখানে সর্বাধিক জার্মান ভাষা জ্ঞানসম্পন্ন ব্যক্তিদের সংখ্যা রয়েছে৷। সুদূর উত্তর, উত্তর এবং আদামাওয়ার উত্তরাঞ্চলে, ফুলানি ভাষা ফুলফুলদে হল সংযোগস্থাপনকারী ভাষা যেখানে ফরাসি শুধুমাত্র একটি প্রশাসনিক ভাষা হিসাবে কাজ করে। যদিও, লোগোন-এট-চারির সুদূর উত্তর অঞ্চলের চাদিয়ান আরবি নিরপেক্ষভাবে সংযোগস্থাপনকারী ভাষা হিসেবে কাজ করে। ২০১৭ সালে ফ্রাঙ্কোফোন ভাষাভাষিদের দ্বারা বৈষম্যমূলক নিপীড়নের বিরুদ্ধে অ্যাংলোফোন জনগণ ভাষাগত প্রতিবাদ করেছিল। বিক্ষোভকারীদের বিরুদ্ধে সামরিক বাহিনী মোতায়েন করা হয় এবং মানুষ নিহত হয়, শত শত কারারুদ্ধ হয় এবং হাজার হাজার দেশ ছেড়ে পালিয়ে যায়। এটি অ্যাম্বাজোনিয়ার একটি স্বাধীন প্রজাতন্ত্রের ঘোষণায় পরিণত হয়, যেটি তখন থেকে অ্যাংলোফোন সংকটে পরিণত হয়েছে। অনুমান করা হয় যে ২০২০ সালের জুনের মধ্যে, এই সংকটের ফলে ৭৪০,০০০ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছিল। ধর্ম ক্যামেরুনে ধর্মীয় স্বাধীনতা এবং বৈচিত্র্যের উচ্চ স্তর রয়েছে। প্রধান ধর্ম হল খ্রিস্টধর্ম, জনসংখ্যার প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ দ্বারা অনুশীলন করা হয়, যেখানে ইসলাম একটি উল্লেখযোগ্য সংখ্যালঘু ধর্ম, যা প্রায় এক-চতুর্থাংশ লোক মেনে চলে। উপরন্তু, ঐতিহ্যগত বিশ্বাস অনেক দ্বারা চর্চা করা হয়. মুসলিমদের উত্তরে সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায়, এবং খ্রিস্টানদের প্রাথমিকভাবে দক্ষিণ এবং পশ্চিম অঞ্চলে বেশি পাওয়া যায়, তবে উভয় ধর্মের অনুশীলনকারীদের সারা দেশে পাওয়া যেতে পারে। বড় শহর উভয় গ্রুপের উল্লেখযোগ্য জনসংখ্যা আছে. ক্যামেরুনের মুসলমানরা সুফি, সালাফি, শিয়া, এবং অ-সাম্প্রদায়িক মুসলমানদের মধ্যে বিভক্ত। উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম প্রদেশের লোকেরা, যারা ব্রিটিশ ক্যামেরুনের একটি অংশ ছিল, তাদের মধ্যে প্রোটেস্ট্যান্টদের সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। দক্ষিণ এবং পশ্চিম অঞ্চলের ফরাসি ভাষী অঞ্চলগুলি মূলত ক্যাথলিক। দক্ষিণের জাতিগত গোষ্ঠীগুলি প্রধানত খ্রিস্টান বা ঐতিহ্যবাহী আফ্রিকান অ্যানিমিস্ট বিশ্বাসকে অনুসরণ করে, অথবা দুটির একটি সমন্বিত সংমিশ্রণ। মানুষ ব্যাপকভাবে জাদুবিদ্যায় বিশ্বাস করে, এবং সরকার এই ধরনের অভ্যাসকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। সন্দেহভাজন ডাইনিরা প্রায়ই জনতার সহিংসতার শিকার হয়। ইসলামপন্থী জিহাদি গ্রুপ আনসার আল-ইসলাম উত্তর ক্যামেরুনে তাদের কর্মকাণ্ড চালায় বলে জানা গেছে। উত্তরাঞ্চলে, স্থানীয়ভাবে প্রভাবশালী ফুলানি জাতিগত গোষ্ঠী বেশিরভাগই মুসলিম, তবে সামগ্রিক জনসংখ্যা মুসলমান, খ্রিস্টান এবং আদিবাসী ধর্মীয় বিশ্বাসের অনুসারীদের (ফুলানিদের দ্বারা কির্দি বা পৌত্তলিক নামে ডাকা হয়) মধ্যে মোটামুটি সমানভাবে বিভক্ত। পশ্চিম অঞ্চলের বামুম জাতিগত গোষ্ঠী মূলত মুসলিম। স্থানীয় ঐতিহ্যবাহী ধর্মগুলি সারা দেশে গ্রামীণ অঞ্চলে চর্চা করা হয় তবে শহরগুলিতে খুব কমই প্রকাশ্যে চর্চা করা হয়, কারণ অনেক আদিবাসী ধর্মীয় গোষ্ঠী স্বতঃস্ফূর্তভাবে স্থানীয় চরিত্রের। সংস্কৃতি গান এবং নাচ সঙ্গীত এবং নৃত্য হল ক্যামেরুনীয় অনুষ্ঠান, উৎসব, সামাজিক সমাবেশ এবং গল্প বলার অবিচ্ছেদ্য অংশ। ঐতিহ্যগত নৃত্যগুলি অত্যন্ত নিয়ন্ত্রিত ও নারী-পুরুষের আলাদা আলাদা ব্যবস্থা করা হয় বা সম্পূর্ণভাবে সম-লিঙ্গের দ্বারা অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ। নাচের উদ্দেশ্য বিশুদ্ধ বিনোদন থেকে ধর্মীয় ভক্তি পর্যন্ত। ঐতিহ্যগতভাবে, সঙ্গীত মৌখিকভাবে আদান প্রদান হয় একটি সাধারণ উপস্থাপনায়, একদল গায়কের একক ধ্বনিতে। বাদ্যযন্ত্রের সঙ্গে হাততালি দেওয়া এবং পায়ে স্ট্যাম্পিং করা সহজ হতে পারে, তবে ঐতিহ্যবাহী বাদ্যযন্ত্রে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে ড্যান্সারদের পরিহিত ঘণ্টা, তালি, ড্রাম এবং কথা বলার ড্রাম, বাঁশি, হর্ন, র‍্যাটল, স্ক্র্যাপার, তারযুক্ত যন্ত্র, শিস, এবং জাইলোফোন; এগুলির সংমিশ্রণ জাতিগত গোষ্ঠী এবং অঞ্চল অনুসারে পরিবর্তিত হয়। কিছু পারফর্মার বীণার মতো বাদ্যযন্ত্র নিয়ে একাই সম্পূর্ণ গান গায়। জনপ্রিয় সঙ্গীত শৈলীর মধ্যে রয়েছে উপকূলের অ্যাম্বাসে বে, বাসার অ্যাসিকো, ব্যাংগাংতে ম্যাঙ্গাম্বেউ এবং বামিলেকের তসামাসি। নাইজেরিয়ান সঙ্গীত অ্যাংলোফোন ক্যামেরুনিয়ান পারফরমারদের প্রভাবিত করেছে এবং প্রিন্স নিকো এমবার্গার হাইলাইফ হিট "সুইট মাদার" ইতিহাসের শীর্ষ-বিক্রীত আফ্রিকান রেকর্ড। দুটি সর্বাধিক জনপ্রিয় সঙ্গীত শৈলী হল মাকোসা এবং বিকুটসি। মাকোসা ডুয়ালায় বিকশিত হয়েছে এবং লোকসংগীত, উচ্চজীবন, আত্মা এবং কঙ্গো সঙ্গীতকে মিশ্রিত করেছে। মনু দিবাঙ্গো, ফ্রান্সিস বেবে, মনি বিলে এবং পেটিট-পেসের মতো অভিনয়শিল্পীরা ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে বিশ্বব্যাপী শৈলীটিকে জনপ্রিয় করেছিলেন। বিকুটসি ইওনডোর মধ্যে যুদ্ধ সঙ্গীত হিসাবে উদ্ভূত হয়েছিল। এন ম্যারি এর মতো শিল্পীরা এটিকে ১৯৪০-এর দশকে শুরু করে একটি জনপ্রিয় নৃত্য সঙ্গীতে বিকশিত করেছিলেন এবং মামা ওহান্ডজা এবং লেস টেটস ব্রুলিসের মতো অভিনয়শিল্পীরা ১৯৬০, ১৯৭০ এবং ১৯৮০-এর দশকে এটিকে আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় করেছিলেন। ছুটির দিন ক্যামেরুনে দেশপ্রেমের সাথে যুক্ত সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছুটি হল জাতীয় দিবস, যাকে ঐক্য দিবসও বলা হয়। সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ধর্মীয় ছুটির মধ্যে রয়েছে অ্যাসাম্পশন ডে এবং অ্যাসেনশন ডে, যা সাধারণত ইস্টারের ৩৯ দিন পরে হয়। উত্তর-পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম প্রদেশ, সম্মিলিতভাবে যাকে আম্বাজোনিয়া বলা হয়, সেখানে ১ লা অক্টোবর জাতীয় ছুটির দিন হিসাবে বিবেচিত হয়, যে তারিখটি এম্বাজোনিয়ানরা ক্যামেরুন থেকে তাদের স্বাধীনতা দিবস হিসাবে বিবেচনা করে। খাবারের ধরন অঞ্চলভেদে খাবারের ধরন ভিন্নরকম হয়, তবে বড় পরিসরের, এক-বেলার, সন্ধ্যার খাবার সারা দেশে প্রচলিত। একটি সাধারণ খাবার কোকোইয়াম, ভুট্টা, কাসাভা (ম্যানিক), বাজরা, কলা, আলু, চাল বা ইয়ামগুলির উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়, যা প্রায়শই ময়দার মতো ফুফুতে ঢেলে দেওয়া হয়। এটি একটি সস, স্যুপ, বা সবুজ শাক, চীনাবাদাম, পাম তেল, বা অন্যান্য উপাদান দিয়ে তৈরি স্টু দিয়ে পরিবেশন করা হয়। মাংস এবং মাছ জনপ্রিয় কিন্তু ব্যয়বহুল সংযোজন, মুরগির মাংস প্রায়ই বিশেষ অনুষ্ঠানের জন্য সংরক্ষিত থাকে। খাবারগুলো প্রায়ই বেশ মশলাদার হয়; মশলাগুলোতে লবণ, লাল মরিচের সস এবং ম্যাগি দেয়া হয়। কাটলারি সাধারণ খাবার, কিন্তু খাদ্যটি ঐতিহ্যগতভাবে ডান হাত দিয়ে পরিবেশন করা হয়। সকালের নাস্তার মধ্যে থাকে কফি বা চা সহ রুটি এবং ফলের অবশিষ্টাংশ। সাধারণত সকালের নাস্তা গমের আটা দিয়ে বিভিন্ন খাবার যেমন পাফ-পাফ (ডোনাটস), কলা এবং ময়দা দিয়ে তৈরি আকরা কলা, শিমের কেক এবং আরও অনেক কিছুতে তৈরি করা হয়। স্ন্যাকস জনপ্রিয়, বিশেষ করে বড় শহরে যেখানে তারা রাস্তার বিক্রেতাদের কাছ থেকে কেনা যেতে পারে। পানি, পাম ওয়াইন এবং মিলেট বিয়ার হল ঐতিহ্যবাহী খাবারের পানীয়, যদিও বিয়ার, সোডা এবং ওয়াইন জনপ্রিয়তা পেয়েছে। ৩৩ এক্সপোর্ট বিয়ার হল জাতীয় ফুটবল দলের অফিসিয়াল পানীয় এবং সবচেয়ে জনপ্রিয় ব্র্যান্ডগুলির মধ্যে একটি। ফ্যাশন ক্যামেরুনের তুলনামূলকভাবে বড় এবং বৈচিত্র্যময় জনসংখ্যা তার সমসাময়িক ফ্যাশনেও বৈচিত্র্যময়। জলবায়ু; ধর্মীয়, জাতিগত এবং সাংস্কৃতিক বিশ্বাস; এবং উপনিবেশবাদ, সাম্রাজ্যবাদ এবং বিশ্বায়নের প্রভাব আধুনিক ক্যামেরুনিয়ান পোশাকে প্রতিফলিত হয়। পোশাকের উল্লেখযোগ্য প্রবন্ধগুলির মধ্যে রয়েছে: ক্যামেরুনের নারীদের পরিহিত প্যাগনেস, সারং; ঐতিহ্যবাহী টুপি চেচিয়া; পুরুষ হ্যান্ডব্যাগ কোয়া; এবং পুরুষদের প্রচলিত পোষাক গান্ডুরা। লেফাফা এবং কটি কাপড় মহিলা এবং পুরুষ উভয়ের দ্বারা ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয় তবে তাদের ব্যবহার অঞ্চলভেদে পরিবর্তিত হয়, ফুলানি শৈলীর প্রভাব উত্তরে বেশি এবং ইগবো এবং ইওরুবা শৈলীর প্রভাব দক্ষিণ ও পশ্চিমে বেশি দেখা যায়। ইমানে আইসি ক্যামেরুনের শীর্ষ ফ্যাশন ডিজাইনারদের একজন যিনি আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছেন। স্থানীয় শিল্প ও কারুশিল্প বাণিজ্যিক, আলংকারিক এবং ধর্মীয় উদ্দেশ্যে সারা দেশে ঐতিহ্যবাহী শিল্প ও কারুশিল্প চর্চা করা হয়। কাঠের খোদাই এবং ভাস্কর্যগুলি বিশেষভাবে সাধারণ পশ্চিম উচ্চভূমির উচ্চ মানের কাদামাটি মৃৎশিল্প এবং সিরামিকের জন্য ব্যবহৃত হয়। অন্যান্য কারুশিল্পের মধ্যে রয়েছে ঝুড়ি বুনন, পুঁতির কাজ, পিতল ও ব্রোঞ্জের কাজ, ক্যালাব্যাশ খোদাই এবং পেইন্টিং, এমব্রয়ডারি এবং চামড়ার কাজ। ঐতিহ্যবাহী আবাসন শৈলীতে স্থানীয় উপকরণ ব্যবহার করা হয় এবং যাযাবর মবোরোর অস্থায়ী কাঠ-এবং-পাতার আশ্রয় থেকে দক্ষিণের জনগণের আয়তক্ষেত্রাকার কাদা-এবং-থ্যাচ ঘর পর্যন্ত পরিবর্তিত হয়। সিমেন্ট এবং টিনের মতো উপকরণের বাসস্থানগুলি ক্রমবর্ধমান সাধারণ। সমসাময়িক শিল্প প্রধানত স্বাধীন সাংস্কৃতিক সংগঠন (ডুয়াল'আর্ট, আফ্রিকা) এবং শিল্পী-চালিত উদ্যোগ (আর্ট ওয়াশ, অ্যাটেলিয়ার ভাইকিং, আর্টবেকারি) দ্বারা প্রচারিত হয়। সাহিত্য ক্যামেরুনিয়ান সাহিত্য ইউরোপীয় এবং আফ্রিকান উভয় থিমগুলিতে মনোনিবেশ করেছে। ঔপনিবেশিক যুগের লেখক যেমন লুই-মারি পাউকা এবং সানকি মাইমো ইউরোপীয় মিশনারি সোসাইটি দ্বারা শিক্ষিত ছিলেন এবং ক্যামেরুনকে আধুনিক বিশ্বে নিয়ে আসার জন্য ইউরোপীয় সংস্কৃতিতে আত্তীকরণের পক্ষে ছিলেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর, মঙ্গো বেটি এবং ফার্দিনান্দ ওয়োনোর মতো লেখকরা ঔপনিবেশিকতার বিশ্লেষণ ও সমালোচনা করেছিলেন এবং আত্তীকরণকে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। চলচ্চিত্র এবং সাহিত্য স্বাধীনতার পরপরই, জিন-পল এনগাসা এবং থেরেসে সীতা-বেলার মতো চলচ্চিত্র নির্মাতারা একইরকম থিম অন্বেষণ করেছিলেন। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি, জাঁ-পিয়েরে ডিকংগুয়ে পিপা এবং ড্যানিয়েল কামওয়া-এর মতো চলচ্চিত্র নির্মাতারা ঐতিহ্যগত এবং উত্তর-ঔপনিবেশিক সমাজের মধ্যে দ্বন্দ্ব মোকাবেলা করেছিলেন। পরবর্তী দুই দশকে সাহিত্য ও চলচ্চিত্রে সম্পূর্ণ ক্যামেরুনিয়ান থিমগুলির উপর বেশি মনোযোগ দেয়া হয়। খেলাধুলা জাতীয় নীতিমালা দৃঢ়ভাবে সব ধরনের খেলাধুলার সমর্থন করে। ঐতিহ্যবাহী খেলার মধ্যে রয়েছে ক্যানো রেসিং এবং কুস্তি, এবং প্রতি বছর ৪০ কিমি (২৫ মাইল) মাউন্ট ক্যামেরুন রেস অফ হোপে কয়েক শত দৌড়বিদ অংশগ্রহণ করে। শীতকালীন অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী কয়েকটি গ্রীষ্মমণ্ডলীয় দেশের মধ্যে ক্যামেরুন অন্যতম। ক্যামেরুনে খেলাধুলার প্রাধান্য রয়েছে ফুটবলে। অপেশাদার ফুটবল ক্লাবগুলি প্রচুর, জাতিগত লাইনে বা কর্পোরেট স্পনসরদের অধীনে সংগঠিত। ১৯৮২ এবং ১৯৯০ ফিফা বিশ্বকাপে শক্তিশালী প্রদর্শনের পর থেকে জাতীয় দল আফ্রিকার অন্যতম সফল দল। ক্যামেরুন পাঁচটি আফ্রিকান কাপ অফ নেশনস শিরোপা এবং ২০০০ অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতেছে। ক্যামেরুন ছিল ২০১৬ সালের নভেম্বর-ডিসেম্বরে নারী আফ্রিকা কাপ অফ নেশনস, ২০২০ আফ্রিকান নেশনস চ্যাম্পিয়নশিপ এবং ২০২১ আফ্রিকা কাপ অফ নেশনস এর আয়োজক দেশ। ক্যামেরুনের মহিলা ফুটবল দল "অদম্য সিংহী" নামে পরিচিত। আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশগ্রহণকারী ক্যামেরুন ক্রিকেট ফেডারেশনের সাথে ক্রিকেটও একটি উদীয়মান খেলা হিসেবে ক্যামেরুনে প্রবেশ করেছে। আরও দেখুন মন্তব্য তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি Global Integrity Report: Cameroon has reporting on anti-corruption in Cameroon Presidency of the Republic of Cameroon প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর ক্যামেরুনের জাতীয় বিধানসভা CRTV — ক্যামেরুন রেডিও টেলিভিশন ক্যামেরুন পর্যটন উত্তর আমেরিকাতে পর্যটন তথ্য দপ্তর। রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Cameroon from UCB Libraries GovPubs Cameroon from CamerPAGES বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ক্যামেরুন বিষয়শ্রেণী:ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:কমনওয়েলথ প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
কেপ ভের্দি
https://bn.wikipedia.org/wiki/কেপ_ভের্দি
পুনর্নির্দেশ কেপ ভার্দে
মধ্য আফ্রিকা
https://bn.wikipedia.org/wiki/মধ্য_আফ্রিকা
right|thumb|350px| মধ্য আফ্রিকা আফ্রিকার মধ্যভাগে অবস্থিত একটি অঞ্চল। এখানে মূলত ১১টি রাষ্ট্র আছে। এরা একত্রে মধ্য আফ্রিকান রাষ্ট্রসমূহের অর্থনৈতিক সম্প্রদায় গঠন করেছে। ২০১১ সাল থেকে দক্ষিণ সুদান স্বাধীনতা লাভের পরে সেই দেশটিকেও সাধারণত এই অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত করা হয়।http://www.upi.com/Top_News/US/2013/12/24/US-Marines-poised-to-enter-South-Sudan/UPI-73481387863000/: "Secretary-General Ban Ki-moon requested the surge in U.N. peacekeepers, saying the troops would be used to help protect tens of thousands of civilians under siege in the landlocked 2-year-old Middle Africa nation." মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্রসমূহের তালিকা অঞ্চল রাষ্ট্র মধ্য আফ্রিকা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:মধ্য আফ্রিকা বিষয়শ্রেণী:মধ্য আফ্রিকার ভূগোল বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার অঞ্চল
কোমোরোস
https://bn.wikipedia.org/wiki/কোমোরোস
কমোরোস দ্বীপপুঞ্জ ভারত মহাসাগরে অবস্থিত কতগুলি দ্বীপ নিয়ে গঠিত একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। দেশটি মোজাম্বিক চ্যানেলের উত্তর প্রান্তে মোজাম্বিক থেকে ২৯০ কিলোমিটার দূরে এবং মাদাগাস্কার থেকে ৩২০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। কোমোরোস দ্বীপপুঞ্জ ১৯৭৫ সাল থেকে একটি স্বায়ত্তশাসিত এলাকা হিসেবে কাজ করছে। ঐ বছর কোমোরোস দ্বীপপুঞ্জের চারটি দ্বীপের তিনটি ফরাসি ঔপনিবেশিক শাসন থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এগুলি হল ঞ্জাজিজা (বা বৃহৎ কোমোর দ্বীপ), ঞ্জাওয়ানি এবং মোয়ালি। কমোরোস দ্বীপপুঞ্জের রাজধানী মোরোনি ঞ্জাজিজা দ্বীপে অবস্থিত। কমর রাষ্ট্র দ্বীপপুঞ্জের চতুর্থ দ্বীপ মায়োতের উপর সার্বভৌমত্ব দাবী করলেও দ্বীপটি এখনও একটি ফরাসি শাসনাধীন এলাকার মর্যাদাপ্রাপ্ত। ইসলাম ধর্ম কমোরোস দ্বীপপুঞ্জের রাষ্ট্রধর্ম। ইতিহাস রাজনীতি প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল thumb|কোমোরোস দ্বীপপুঞ্জের মানচিত্র অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি সামরিক বাহিনী কোমোরোসের সামরিক বাহিনীর নাম Armée nationale de développement বা আর্মে নাসিওনাল দ্য দেভেলপমঁ। এটিতে একটি ক্ষুদ্র স্থলসেনাবাহিনী, ৫০০ সদস্যবিশিষ্ট পুলিশ বাহিনী এবং ৫০০ সদস্যবিশিষ্ট প্রতিরক্ষা বাহিনী আছে। ফ্রান্স কোমোরোসের নৌ প্রতিরক্ষা প্রদান করে, সামরিক বাহিনীকে প্রশিক্ষণ দেয় এবং আকাশপথ নজরদারির কাজ করে। কোমোরোস সরকারের অনুরোধে এখানে ফ্রান্সের একটি ছোট সামরিক দলের ঘাঁটি আছে। আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি কোমোরোস দ্বীপপুঞ্জের সরকারি ওয়েবসাইট রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Comoros Humanitarian news and analysis from IRIN Country Profile from BBC News Comoros from UCB Libraries GovPubs Drs. Martin and Harriet Ottenheimer - Comoro Islands বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আরব লিগের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:কোমোরোস বিষয়শ্রেণী:আরবিভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ফেডারেল প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:ভারত মহাসাগরের দ্বীপ রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:দ্বীপ রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:স্বল্পোন্নত দেশ বিষয়শ্রেণী:ছোট দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৭৫-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র
https://bn.wikipedia.org/wiki/গণতান্ত্রিক_কঙ্গো_প্রজাতন্ত্র
গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র বা ডিআরসি ( ফরাসি: République démocratique du Congo; কঙ্গো : Repubilika ya Kôngo ya Dimokalasi )–যা পূর্বে জায়ার নামে পরিচিত ছিল– মধ্য আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। ভূমি এলাকা অনুসারে ডিআরসি হল আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ এবং বিশ্বের ১১ তম বৃহত্তম দেশ । প্রায় ১১২ মিলিয়ন জনসংখ্যা বসবাসকারী এই দেশটি বিশ্বের সবচেয়ে জনবহুল দেশগুলির একটি। জাতীয় রাজধানী ও বৃহত্তম শহর হল কিনশাসা, যা অর্থনৈতিক কেন্দ্রও বটে। দেশটি কঙ্গো প্রজাতন্ত্র , মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ সুদান, উগান্ডা, রুয়ান্ডা, তানজানিয়া, বুরুন্ডি, জাম্বিয়া, অ্যাঙ্গোলা এবং দক্ষিণ আটলান্টিক মহাসাগরের সীমান্তে অবস্থিত। ইতিহাস তৎকালীন কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১৯৬০ সালের ৩০ জুন বেলজিয়াম থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে এবং জাতীয়তাবাদী পাত্রিস লুমুম্বা প্রথম কঙ্গোর প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। কঙ্গো সঙ্কটের সময় জোসেফ-ডিসিরে মোবুতু (পরবর্তীতে নিজের নাম পরিবর্তন করেছিলেন মোবুতু সেসে সেকো) আনুষ্ঠানিকভাবে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসে এবং রাজনীতিগত দ্বন্দের কারণে লুমুম্বাকে গ্রেপ্তার করে লিওপোডভিল থেকে দূরে Thysville military barracks Camp Hardy তে চালান করে দেয়। ক্যাম্প হারডির পরিচালনা ব্যাবস্থা খুবই নিম্নমানের এবং কর্মচারীরা বেতন না পাওয়ায় কাজ বন্ধ করে আন্দোলন শুরু করলে ১৯৬১ সালের ১৭ জানুয়ারি বেলজিয়ান কলোনি মন্ত্রী Harold Charles d'Aspremont Lynden লুমুম্বাকে জোরপূর্বক কাতাঙ্গাতে নিয়ে যাওয়ার নির্দেশ দেয়। পরবর্তীতে তৎকালীন রাষ্ট্রপতি Tshombe এবং তার মন্ত্রীপরিষদের পরিকল্পনা অনুযায়ী লুমুম্বাকে একটি গোপন স্থানে নিয়ে মৃত্যুদন্ড দেয়। মোবুতু ১৯৭১ সালে দেশটির নাম পরিবর্তন করে জাইর রাখে। কিন্তু মোবুতু দেশের একমাত্র জাতীয় দল হওয়ায় দেশটি একটি স্বৈরাচারী একদলীয় রাষ্ট্র হিসাবে পরিচালিত হচ্ছিলো। ফলে ১৯৯০ এর প্রথম দিকে, মোবুতুর সরকার দুর্বল হতে শুরু করে। ১৯৯৪-এ রুয়ান্ডার গণহত্যা এবং পূর্বের অস্থিতিশীলতা ১৯৯৬ সালে রুয়ান্ডার নেতৃত্বে একটি আগ্রাসনের দিকে পরিচালিত করে, যার ফলে পরের বছর প্রথম কঙ্গো যুদ্ধে মোবুতুকে ক্ষমতাচ্যুত করা হয়। ভূগোল থাম্ব|280x280পিক্সেল|কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্রের মানচিত্র অবস্থানঃ দেশটির উত্তরে রয়েছে 'কেন্দ্রীয় আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র'(Central African Republic) এবং দক্ষিণ সুদান। এর পূর্বে রয়েছে উগান্ডা,বুরুন্ডি এবং তানজানিয়া। দক্ষিণ-পূর্বে রয়েছে জাম্বিয়া,দক্ষিণ-পশ্চিমে রয়েছে অ্যাঙ্গোলা। দেশটির পশ্চিমে রয়েছে সীমিত সমুদ্রসীমা। ভৌগোলিক স্থানাঙ্কঃ ০ ডিগ্রি ০০ মিনিট উ. ২৫ ডিগ্রি ০০ মিনিট পূ. মহাদেশঃ আফ্রিকা ক্ষেত্রফলঃ মোট: ২,৩৪৪,৮৫৮ বর্গ কিমি ভূমি: ২,২৬৭,০৪৮ বর্গ কিমি পানি: ৭৭,৮১০ বর্গ কিমি প্রাকৃতিক সম্পদঃ কোবাল্ট,তামা,পেট্রোলিয়াম,ডায়মন্ড,সোনা,রুপা,জিংক/দস্তা,টিন,ইউরেনিয়া,কয়লা,নিয়োবিয়াম, ম্যাঙ্গানিজ আবাদী জমিঃ ৩.০৯ শতাংশ সেচসম্পন্ন ভূমিঃ ১০৫ বর্গ কিমি (২০০৩) মোট ব্যবহারযোগ্য পানিসম্পদঃ ১২৮৩ ঘন কিমি (২০১১) আবহাওয়া ও জলবায়ুঃ গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র নিরক্ষরেখার উপর অবস্থিত। এর এক-তৃতীয়াংশ দেশের উত্তরে এবং দুই-তৃতীয়াংশ দক্ষিণে রয়েছে। নদীর অববাহিকায় জলবায়ু উষ্ণ ও আর্দ্র এবং দক্ষিণের উঁচু অঞ্চলগুলো শীতল ও শুষ্ক। রেনজুরি পাহাড়ে আল্পাইন জলবায়ু বিদ্যমান। নিরক্ষরেখার দক্ষিণে বর্ষাকাল অক্টোবর-মে এবং উত্তরে তা এপ্রিল-নভেম্বর পর্যন্ত স্থায়ী হয়। পুরোদেশে গড় বৃষ্টিপাত ১০৭০ মিমি (৪২ ই)। এই অঞ্চলে সূর্যরশ্মি সরাসরি পরে এবং সমুদ্রের পানি দ্রুত বাষ্পে পরিণত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায় বলে এখানকার জলবায়ু 'নিরক্ষীয় জলবায়ু' নামে পরিচিত। মিঠাপানি উত্তোলনঃ (দেশীয়/শিল্পজাত/কৃষিজ) মোট উত্তোলন - ০.৬৮ ঘন কিমি/বছর (৬৮℅/২১℅/১১℅) মাথাপিছু উত্তোলন- ১১.২৫ ঘন কিমি/বছর (২০০৫) প্রাকৃতিক দুর্যোগঃ দেশটির দক্ষিণে নির্দিষ্ট সময় পর পর খরা হয়। মৌসুমি কঙ্গো নদীর বন্যা সংঘটিত হয় এবং পূর্বদিকে আলবার্টিনের ফাটলে সক্রিয় আগ্নেয়গিরি রয়েছে। পরিবেশগত বর্তমান সমস্যাঃ - শিকারী বন্যপ্রাণীরা (যেমনঃ শিকারী কুকুর/lycon pictus) বসবাসরত মানুষদের কাছে হুমকিস্বরূপ; ফলে বর্তমানে এসব প্রাণী নির্মূলিত। -পানি দূষণ -বন উজাড় (কৃষিকাজের জন্য আদিবাসীরা বন কেটে ধ্বংস করছে) -উদ্বাস্তু কর্তৃক পরিবেশ দূষণ -খনিজগুলো খননও পরিবেশগত ক্ষতির কারণ। পরিবেশ নিয়ে আন্তর্জাতিক চুক্তিসমূহঃ জীববৈচিত্র্য,মরুভূমি,বিপন্ন প্রজাতি,হানিকর বর্জ্য,সামুদ্রিক আইন,সমুদ্র দিয়ে পাচার নিষিদ্ধকরণ,পারমাণবিক পরীক্ষা নিষিদ্ধকরণ,ওজোন স্তর সুরক্ষা,ক্রান্তীয় কাঠ ৮৩,ক্রান্তীয় কাঠ ৯৪,জলাভূমি সংরক্ষণ ইত্যাদি স্বাক্ষরিত। কিন্তু পরিবেশগত পরিবর্তন চুক্তিটি এখনও অনুমোদিত নয়। প্রান্তবিন্দুসমূহঃ (extreme points) প্রান্তবিন্দু হলো এমন স্থানসমূহ যা অন্যান্য সব স্থান থেকে সবচেয়ে উত্তর,দক্ষিণ,পূর্ব,পশ্চিমে অবস্থিত। উত্তরতম বিন্দুঃ ওরিয়েন্টাল অঞ্চলের 'কেন্দ্রীয় আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রের' এমবাগা শহরের পশ্চিমে বোমু নদীর মধ্যে অবস্থিত একটি নামহীন স্থান। পূর্বতম বিন্দুঃ স্থানটি উগান্ডার সীমান্তে ওরিয়েন্টাল প্রদেশের মহাগি বন্দরের পশ্চিমে অ্যালবার্ট হ্রদের প্রবেশ অংশে অবস্থিত। দক্ষিণতম বিন্দুঃ স্থানটি জাম্বিয়ার সীমান্তে কাটাঙ্গা প্রদেশের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। পশ্চিমতম বিন্দুঃ স্থানটি আটলান্টিক মহাসাগরে ক্যাবিন্ডার সীমান্তে 'বাস-কঙ্গো' প্রদেশে অবস্থিত। সামরিক বাহিনী গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গোর সামরিক বাহিনীর নাম ফরাসিতে Forces Armées de la République Démocratique du Congo (FARDC) ফর্স আর্মে দ্য লা রেপ্যুব্লিক দেমোক্রাতিক দ্যু কঙ্গো। ২০০৩ সালের জুলাই মাসে দ্বিতীয় কঙ্গো যুদ্ধের অবসানের পর এটিকে শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে ঢেলে সাজানো হচ্ছে। সামরিক বাহিনীর বেশির ভাগ সেনাই স্থল সেনাবাহিনীর সদস্য। তবে একটি ক্ষুদ্র বিমান বাহিনী এবং ক্ষুদ্রতর নৌবাহিনীও বিদ্যমান। সব মিলিয়ে এই তিন বাহিনীতে সদস্যসংখ্যা প্রায় ১,৩০,০০০। এছাড়া রিপাবলিকান গার্ড নামের একটি রাষ্ট্রপতি প্রতিরক্ষা বাহিনী আছে। আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকার রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Country Profile from the BBC News কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র from UCB Libraries GovPubs কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র at WorldWikia Crisis briefing on Congo from Reuters AlertNet সংঘাতের খবর প্রতিবেদন প্রচার BBC DR Congo: Key facts BBC Q&A: DR Congo conflict BBC Timeline: কঙ্গোর গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র BBC In pictures: Congo crisis "Rape of a Nation" by Marcus Bleasdale on MediaStorm Maps of Congo before and after independence বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:স্বল্পোন্নত দেশ বিষয়শ্রেণী:প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
কঙ্গো প্রজাতন্ত্র
https://bn.wikipedia.org/wiki/কঙ্গো_প্রজাতন্ত্র
কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ( , ) হচ্ছে মধ্য আফ্রিকার পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত একটি দেশ। দেশটি কঙ্গো-ব্রাজাভিল, কঙ্গো রিপাবলিক বা কেবল কঙ্গো নামেও পরিচিত। দেশটির পশ্চিমে গ্যাবন, উত্তর-পশ্চিমে ক্যামেরুন এবং উত্তর-পূর্বে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ-পূর্বে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণে অ্যাঙ্গোলার ছিটমহল ক্যাবিন্দা এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থিত। দীর্ঘদিন ফ্রান্সের উপনিবেশ থাকায় ফরাসি হল কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সরকারি ভাষা। এই অঞ্চলটি কমপক্ষে ৩,০০০ বছর আগে বান্টু-ভাষী উপজাতিদের দ্বারা প্রভাবিত ছিল। তারা কঙ্গো নদীর অববাহিকার দিকে অগ্রসর হয়ে বাণিজ্য সংযোগ তৈরি করেছিল। কঙ্গো পূর্বে নিরক্ষীয় আফ্রিকার ফরাসি উপনিবেশের অংশ ছিল। কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১৯৫৮ সালের ২৮ নভেম্বর প্রতিষ্ঠিত হয় এবং ১৯৬০ সালে ফ্রান্স থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এটি ১৯৬৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত একটি মার্কসবাদী-লেনিনবাদী কমিউনিস্ট রাষ্ট্র ছিল। দেশটি তখন গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো নামে পরিচিত ছিল। ১৯৯২ সাল থেকে সার্বভৌম রাষ্ট্রটিতে বহুদলীয় নির্বাচন হয়েছে। যদিও ১৯৯৭ সালের কঙ্গো গৃহযুদ্ধে গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত সরকারকে উৎখাত করা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ১৯৭৯ সালে প্রথম ক্ষমতায় আরোহণ করেন। এর পর থেকে তিনি চার দশকেরও বেশি সময় ধরে এখনও দেশটি শাসন করে আসছেন। কঙ্গো প্রজাতন্ত্র আফ্রিকান ইউনিয়ন, জাতিসংঘ, লা ফ্রাঙ্কোফোনি, মধ্য আফ্রিকান রাজ্যগুলোর অর্থনৈতিক সম্প্রদায় এবং জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সদস্য। এটি গিনি উপসাগরের চতুর্থ বৃহত্তম তেল উৎপাদক দেশ হয়ে উঠেছে। কিছু এলাকায় রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং দেশব্যাপী তেলের রাজস্বের অসম বন্টন সত্ত্বেও এই সুবিধা দেশটিকে কিছুটা সমৃদ্ধি প্রদান করেছে। কঙ্গোর অর্থনীতি তেল খাতের উপর ব্যাপকভাবে নির্ভরশীল। তাই ২০১৫-এর পরে তেলের দাম কমে যাওয়ার পর থেকে দেশটির অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি যথেষ্ট মন্থর হয়েছে। এই দেশের জনসংখ্যা প্রায় ৫২ লক্ষ। এর মধ্যে ৮৮.৫% মানুষ খ্রিস্টান ধর্ম পালন করে। ব্যুৎপত্তি কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের নামকরণ করা হয়েছে কঙ্গো নদীর নামানুসারে। আবার এই নদীর নামকরণ করা হয়েছে কঙ্গো নামেরই একটি বান্টু রাজ্য থেকে। ১৪৮৩Gates, Louis & Appiah, Anthony. বা১৪৮৪ সালে পর্তুগিজদের আফ্রিকা আবিষ্কারের সময় তারা এই রাজ্য ও নদীর মুখ দখল করেছিল।Olson, James S. & Shadle, Robert. ফলে তারা নদীটির এরূপ নামকরণ করে। আবার এই কঙ্গো রাজ্যের নামটি এর জনগণ থেকে উদ্ভূত হয়েছে। সেখানখার অধিবাসীদের নাম বাকঙ্গোর শেষাংশ থেকে এর উৎপত্তি। এর অর্থ হচ্ছ "শিকারী" (, এনকঙ্গো )।Bentley, Wm. Holman. যে সময়কালে ফ্রান্স কঙ্গোতে উপনিবেশ করে, তখন এটি ফরাসি কঙ্গো বা মধ্য কঙ্গো নামে পরিচিত ছিল। প্রতিবেশী ডেমোক্রেটিক রিপাবলিক অফ কঙ্গো থেকে আলাদা করার জন্য এটিকে কখনও কখনও কঙ্গো (ব্রাজাভিল) বা কঙ্গো-ব্রাজাভিল নামেও উল্লেখ করা হয়। ব্রাজাভিল উপনিবেশের প্রতিষ্ঠাতা পিয়েরে সাভোর্গনান ডি ব্রাজ্জার কাছ থেকে উদ্ভূত একজন ইতালীয় অভিজাত ব্যক্তি, যার শিরোনামটি মোরুজ্জোর কমুনে ব্রাজাস্কো শহরকে উল্লেখ করে। এর নাম ল্যাটিন ব্রাটিউস বা ব্র্যাকসিয়াস থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। দুটো শব্দেরই অর্থ "বাহু"।Frau, Giovanni Dizionario Toponomastico Friuli-Venezia Giulia. ইতিহাস প্রাক-ঔপনিবেশিক বান্টু-ভাষী লোকেরা বান্টু সম্প্রসারণের সময় উপজাতি প্রতিষ্ঠা করেছিল। তারা মূলত বাস্তুচ্যুত হয়েছিল এবং প্রায় ১৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে এই অঞ্চলের প্রাচীনতম বাসিন্দা পিগমি জনগোষ্ঠীকে শোষণ করেছিল। বাকঙ্গো হচ্ছে একটি বান্টু জাতিগত গোষ্ঠী। তারা বর্তমান অ্যাঙ্গোলা, গ্যাবন এবং গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের কিছু অংশ দখল করেছিল এবং সেই দেশগুলোর মধ্যে জাতিগত ঘনিষ্ঠতা এবং প্রতিদ্বন্দ্বিতার ভিত্তি গঠন করেছিল। বেশ কয়েকটি বান্টু রাজ্য, বিশেষ করে কঙ্গো, লোয়াঙ্গো এবং টেকের রাজ্যগুলো কঙ্গো নদী অববাহিকার দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্য বাণিজ্য সংযোগ তৈরি করেছিল। পর্তুগিজ অভিযাত্রী ডিয়োগো কাও ১৪৮৪ সালে কঙ্গোর মুখে পৌঁছেছিলেন।Olson, James S. & Shadle, Robert. এর পর সেখানকার অভ্যন্তরীণ বান্টু সাম্রাজ্য এবং ইউরোপীয় বণিকদের মধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্ক দ্রুত বৃদ্ধি পায়। তারা বিভিন্ন পণ্যের ব্যবসা করত। তারা উৎপাদিত দ্রব্য তৈরি করত এবং পশ্চিমাঞ্চলে বন্দী ও দাসত্ব করা মানুষদের মধ্যেও এই ব্যবসা চালিয়ে যেত। ট্রান্স-অ্যাটলান্টিক বাণিজ্যের অন্যতম কেন্দ্র হিসেবে বহু শতাব্দী পরে, কঙ্গো নদীর ব-দ্বীপের সরাসরি ইউরোপীয় উপনিবেশ ১৯ শতকের শেষের দিকে শুরু হয়। পরবর্তীকালে এই অঞ্চলে বান্টু সমাজের শক্তি হ্রাস পায়।Boxer, C. R. The Portuguese Seaborne Empire, 1415–1825, A. A. Knopf, 1969, ফরাসি ঔপনিবেশিক যুগ থাম্ব|এন'গাঙ্গু এম'ভোউম্বে নিয়াম্বির আদালত, আফ্রিকার বর্ণনা বই থেকে (১৬৬৮) কঙ্গো নদীর উত্তরের এলাকাটি ১৮৮০ সালে বাটেকের রাজা মাকোকোর সাথে পিয়েরে ডি ব্রাজার চুক্তির ফলে ফরাসি সার্বভৌমত্বের অধীনে আসে।Olson, James S. & Shadle, Robert. মাকোকোর মৃত্যুর পর, তার বিধবা রানী এনগালিফুরউ চুক্তির শর্তাবলী বহাল রাখেন এবং উপনিবেশকারীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ মিত্র হয়ে ওঠেন। এই কঙ্গো উপনিবেশটি প্রথমে ফরাসি কঙ্গো নামে পরিচিত হয়, তারপর ১৯০৩ সালে মধ্য কঙ্গো নামে পরিচিত হয়। ১৯০৮ সালে ফ্রান্স মধ্য কঙ্গো, গ্যাবন, শাদ এবং ওবাঙ্গুই-চারি (আধুনিক মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র ) নিয়ে গঠিত ফ্রেঞ্চ নিরক্ষীয় আফ্রিকা (এইএফ) সংগঠিত করে। ফরাসিরা এই উপনিবেশের ফেডারেল রাজধানী হিসেবে ব্রাজাভিলকে মনোনীত করে। কঙ্গোতে ঔপনিবেশিক শাসনের প্রথম ৫০ বছরের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রাকৃতিক সম্পদ আহরণকে কেন্দ্র করে পরিচালিত হয়। তবে এসব অবকাঠামোগত উন্নয়নের পদ্ধতিগুলো প্রায়ই নৃশংস ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে কঙ্গো মহাসাগর রেলওয়ে নির্মাণে কমপক্ষে ১৪,০০০ প্রাণ হারিয়েছে বলে অনুমান করা হয়েছে।Olson, James S. & Shadle, Robert. দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ফ্রান্সের নাৎসি দখলের সময়, ব্রাজাভিল ১৯৪০ থেকে ১৯৪৩ সালের মধ্যে মুক্ত ফ্রান্সের প্রতীকী রাজধানী হিসেবে কাজ করেছিল।United States State Department. ১৯৪৪ সালের ব্রাজাভিল সম্মেলন ফরাসি ঔপনিবেশিক নীতিতে বড় সংস্কারের সময়কালের সূচনা করে। কঙ্গো এইএফ এবং ফেডারেল রাজধানী ব্রাজাভিলের মধ্যে কেন্দ্রীয় ভৌগোলিক অবস্থানের ফলে ঔপনিবেশিক প্রশাসনিক এবং অবকাঠামো ব্যয়ের যুদ্ধোত্তর সম্প্রসারণ থেকে উপকৃত হয়েছে। ১৯৪৬ সালের সংবিধান গৃহীত হওয়ার পরে এটির একটি স্থানীয় আইনসভাও ছিল যা চতুর্থ প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিল। ১৯৫৮ সালে পঞ্চম প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠাকারী ফরাসি সংবিধানের সংশোধনের পর, ফ্রেঞ্চ নিরক্ষীয় আফ্রিকা বা এইএফ এর অংশগুলোতে বিভক্ত হয়ে বিলুপ্ত হয়ে যায়। এর ফলে ফ্রেঞ্চ নিরক্ষীয় আফ্রিকার প্রতিটি অংশ ফরাসি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি স্বায়ত্তশাসিত উপনিবেশে পরিণত হয়। এই সংস্কারের সময় মধ্য কঙ্গো ১৯৫৮ সালে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র হিসাবে পরিচিত হয়Robbers, Gerhard (2007). ১৯৫৯ সালে দেশটি এর প্রথম সংবিধান প্রকাশ করে। এমবোচিস (তিনি জ্যাক ওপানগল্টের পক্ষে ছিলেন) এবং লরিস এবং কঙ্গোস (তারা ফরাসি নিরক্ষীয় আফ্রিকায় নির্বাচিত প্রথম কৃষ্ণাঙ্গ মেয়র ফুলবার্ট ইউলুকে সমর্থন করেছিলেন) মধ্যে বৈরিতার ফলে ১৯৫৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে ব্রাজাভিলে ধারাবাহিক দাঙ্গা হয়। এটি ফরাসি সেনাবাহিনী পরাজিত করে।CONGO REPUBLIC: BRAZZAVILLE RIOTS AFTERMATH . ১৯৫৯ সালের এপ্রিলে দেশটিতে নতুন নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ১৯৬০ সালের আগস্টে কঙ্গো স্বাধীন হওয়ার সময়, ইউলুর প্রাক্তন প্রতিপক্ষ ওপাংল্ট তার অধীনে কাজ করতে সম্মত হন। এর ফলে ইউলু কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি হন। তখন পোয়াঁত-নোয়ারের রাজনৈতিক উত্তেজনা নেক বেশি হওয়ায় তৎকালীন রাষ্ট্রপতি ইউলু দেশটির রাজধানী ব্রাজাভিলে স্থানান্তরিত করেছিলেন। স্বাধীনতা-উত্তর যুগ বাম|থাম্ব| আলফোনস ম্যাসাম্বা-ডেবাটের একদলীয় শাসন (১৯৬৩-১৯৬৮) " বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র " এর একটি রাজনৈতিক অর্থনৈতিক কৌশল বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিল। কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১৯৬০ সালের ১৫ ই আগস্ট তারিখে ফ্রান্স থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীন হয়। ইউলু দেশের প্রথম রাষ্ট্রপতি হিসাবে শাসন করেছিলেন। পরবর্তীতে শ্রমিক উপাদান এবং প্রতিদ্বন্দ্বী রাজনৈতিক দলগুলো তিন দিনের অভ্যুত্থানকে উস্কে দেয় যা তাকে ক্ষমতাচ্যুত করে। তখন কঙ্গোর সামরিক বাহিনী সংক্ষেপে দেশটি দখল করে নেয় এবং আলফোন্স মাসাম্বা-ডেবাতের নেতৃত্বে একটি বেসামরিক অস্থায়ী সরকার প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৬৩ সালের সংবিধান অনুযায়ী, মাসাম্বা-ডেবাত পাঁচ বছরের জন্য রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। মাসাম্বা-ডেবাতের ক্ষমতায় থাকার সময়, সরকার "বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র" কে দেশের সাংবিধানিক মতাদর্শ হিসাবে গ্রহণ করেছিল। ১৯৬৫ সালে কঙ্গো সোভিয়েত ইউনিয়ন, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন, উত্তর কোরিয়া এবং উত্তর ভিয়েতনামের সাথে সম্পর্ক স্থাপন করে। ১৯৬৫ সালের ১৪ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি রাতে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের তিনজন বিশিষ্ট সরকারি কর্মকর্তাকে অপহরণ করা হয়। তারা ছিলেন: কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের প্রসিকিউটর লাজারে মাতসোকোটা, সুপ্রিম কোর্টের প্রেসিডেন্ট জোসেফ পুয়াবো এবং কঙ্গোর তথ্য সংস্থার পরিচালক আনসেলমে মাসুমেমে। এর মধ্যে দু'জনের লাশ পরে কঙ্গো নদীর তীরে বিকৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।Bazenguissa-Ganga, Rémy.Africa Research Bulletin. মাসাম্বা-ডেবাতের সরকার তার দলের মিলিশিয়া ইউনিটকে প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য কয়েকশত কিউবান সেনাকে দেশটিতে আমন্ত্রণ জানায়। এই সৈন্যরা তার সরকারকে ১৯৬৬ সালে একটি অভ্যুত্থান থেকে বাঁচতে সাহায্য করেছিল। এই অভ্যুত্থানের নেতৃত্বে ভবিষ্যতের রাষ্ট্রপতি মারিয়ান নগুয়াবির অনুগত প্যারাট্রুপাররা। তা সত্ত্বেও, মাসাম্বা-ডেবাত দেশের অভ্যন্তরে বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক, উপজাতীয় এবং মতাদর্শগত দলগুলোর মধ্যে সমন্বয় সাধন করতে অক্ষম ছিলেন। এর ফলে ১৯৬৮ সালের সেপ্টেম্বরে রক্তপাতহীন অভ্যুত্থানের মাধ্যমে তার শাসনের আকস্মিক সমাপ্তি ঘটে। থাম্ব|মারিয়েন এনগোয়াবি আফ্রিকার প্রথম মার্কসবাদী-লেনিনবাদী রাষ্ট্র ঘোষণা করে দেশটির নাম পরিবর্তন করে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো রাখেন। ১৯৭৭ সালে তাকে হত্যা করা হয়। অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী মারিয়েন এনগুয়াবি ১৯৬৮ সালের ৩১ ডিসেম্বরে দেশটির রাষ্ট্রপতির পদ গ্রহণ করেন। এক বছর পরে এনগুয়াবি কঙ্গো আফ্রিকার প্রথম "গণ প্রজাতন্ত্র" হিসেবে গণপ্রজাতন্ত্রী কঙ্গো ঘোষণা করেন এবং কঙ্গো লেবার পার্টি (পিসিটি) নাম পরিবর্তন করে জাতীয় বিপ্লবী আন্দোলনের সিদ্ধান্ত ঘোষণা করেন। তিনি ১৯৭২ সালে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টায় বেঁচে গিয়েছিলেন। কিন্তু ১৯৭৭ সালের ১৬ মার্চ তাকে হত্যা করা হয়েছিল। পার্টির ১১ সদস্যের সামরিক কমিটি (সিএমপি) তখন একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান হিসাবে মনোনীত হয়েছিল। তখন জোয়াকিম ইয়োম্বি-ওপাঙ্গো রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। দুই বছর পরে ইয়োম্বি-ওপাঙ্গোকে ক্ষমতা থেকে বাধ্য করা হয় এবং এরপর ডেনিস সাসও এনগুয়েসো নগুয়েসো নতুন রাষ্ট্রপতি হন। ডেনিস সাসও এনগুয়েসো নগুয়েসো দেশটিকে পূর্ব ব্লকের সাথে সংযুক্ত করেছিলেন এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে বিশ বছরের বন্ধুত্ব-চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলেন। বছরের পর বছর ধরে, ডেনিস সাসও এনগুয়েসোকে তার একনায়কত্ব বজায় রাখার জন্য রাজনৈতিক নিপীড়নের উপর বেশি এবং পৃষ্ঠপোষকতার উপর কম নির্ভর করতে হয়েছিল। ১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের পতনের ফলে সোভিয়েত সহায়তা শেষ হয়ে যায় এবং এটি ক্ষমতা ত্যাগ করে। বহুদলীয় গণতন্ত্রের সময়কালে কঙ্গোর প্রথম নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি (১৯৯২-১৯৯৭) হয়ে ওঠা পাস্কাল লিসুবা অর্থনীতিকে উদারীকরণের জন্য আইএমএফের সহায়তায় অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়নের চেষ্টা করেছিলেন। ১৯৯৬ সালের জুনে আইএমএফ তিন বছরের এসডিআর ৬৯.৫ মিলিয়ন (মার্কিন $ ১০০ মিলিয়ন) বর্ধিত কাঠামোগত সমন্বয় সুবিধা (ইএসএএফ) অনুমোদন করে। ১৯৯৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে কঙ্গোতে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে এটি একটি নতুন বার্ষিক চুক্তি ঘোষণার দ্বারপ্রান্তে ছিল। কঙ্গোর গণতান্ত্রিক অগ্রগতি ১৯৯৭ সালে লাইনচ্যুত হয়। তখন লিসুবা এবং ডেনিস সাসও এনগুয়েসো গৃহযুদ্ধে ক্ষমতার জন্য লড়াই শুরু করে। ১৯৯৭ সালের জুলাই মাসে নির্ধারিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এগিয়ে আসার সাথে সাথে লিসুবা এবং ডেনিস সাসও এনগুয়েসোউ শিবিরের মধ্যে উত্তেজনা বাড়তে থাকে। ৫ ই জুনে রাষ্ট্রপতি লিসুবার সরকারি বাহিনী ব্রাজাভিলে ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর কম্পাউন্ডটি ঘিরে ফেলে এবং ডেনিস সাসও এনগুয়েসো তার ব্যক্তিগত মিলিশিয়ার ("কোবরাস" নামে পরিচিত) সদস্যদের প্রতিরোধ করার আদেশ দেয়। এইভাবে চার মাসের একটি সংঘাত শুরু হয়েছিল যা ব্রাজাভিলের বেশিরভাগ অংশ ধ্বংস বা ক্ষতিগ্রস্থ করেছিল। এর ফলে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষের মৃত্যু হয়। অক্টোবরের প্রথম দিকে অ্যাঙ্গোলা সরকার ডেনিস সাসও এনগুয়েসোকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য কঙ্গো আক্রমণ শুরু করে। অক্টোবরের মাঝামাঝি সময়ে লিসুবা সরকারের পতন ঘটে। এর পরপরই ডেনিস সাসও এনগুয়েসো নিজেকে প্রেসিডেন্ট ঘোষণা করেন। বাম|থাম্ব| ২০১৫ সালের অক্টোবরে ব্রাজাভিলে একটি সাংবিধানিক সংস্কার সমাবেশ। সংবিধানের বিতর্কিত সংস্কারগুলো পরবর্তীতে একটি বিতর্কিত নির্বাচনে অনুমোদিত হয়েছিল যা বিক্ষোভ এবং সহিংসতা দেখেছিল। ২০০২ সালের বিতর্কিত নির্বাচনে ডেনিস সাসও এনগুয়েসো প্রায় ৯০% ভোট পেয়ে জয়লাভ করেন। তার দুই প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী লিসোবা এবং বার্নার্ড কোলেলাসকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা থেকে বিরত রাখা হয়েছিল। একমাত্র অবশিষ্ট বিশ্বাসযোগ্য প্রতিদ্বন্দ্বী, আন্দ্রে মিলনগো তার সমর্থকদের নির্বাচন বয়কট করার পরামর্শ দেন এবং তারপরে নির্বাচন থেকে সরে আসেন। ২০০২ সালের জানুয়ারিতে গণভোটের মাধ্যমে সম্মত হওয়া একটি নতুন সংবিধান রাষ্ট্রপতিকে নতুন ক্ষমতা প্রদান করে। এছাড়াও সংশোধিত নতুন সংবিধানের মাধ্যমে তার মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত বাড়িয়ে নিয়ে এবং একটি নতুন দ্বি-কক্ষীয় সংসদ ব্যবস্থা চালু করা হয়। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা রাষ্ট্রপতি নির্বাচন এবং সাংবিধানিক গণভোটের আয়োজন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন। উভয়ই তাদের একদলীয় রাষ্ট্রের কঙ্গোর যুগের সংগঠনের কথা মনে করিয়ে দেয়। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পর, পুল অঞ্চলে সরকারি বাহিনী এবং যাজক নটুমির নেতৃত্বে বিদ্রোহীদের মধ্যে লড়াই পুনরায় শুরু হয়। ২০০৩ সালের এপ্রিলে এই সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। ডেনিস সাসও এনগুয়েসোও ২০০৯ সালের জুলাই মাসে পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে জয়লাভ করেন। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের একটি মানবাধিকার বিষয়ক বেসরকারি সংস্থা কঙ্গোলিজ অবজারভেটরি অফ হিউম্যান রাইটসের মতে, নির্বাচনে "খুব কম" ভোটারের উপস্থিতি এবং নির্বাচনজুড়ে "জালিয়াতি ও অনিয়ম" চিহ্নিত করা হয়েছিল।Vote results expected as opposition alleges fraud . ২০০৯ সালের জুলাই মাসে ডেনিস সাসও এনগুয়েসো পরবর্তী রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও জয়ী হন। একটি বেসরকারি সংস্থা কঙ্গোজ অবজারভেটরি অব হিউম্যান রাইটসের মতে, এই নির্বাচনে "খুব কম" ভোট এবং "জালিয়াতি ও অনিয়ম" দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল। মার্চ ২০১৫ সালে, ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ঘোষণা করেছিলেন যে তিনি আরও একটি মেয়াদে ক্ষমতায় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করতে চান এবং অক্টোবরে একটি সাংবিধানিক গণভোটের ফলে একটি পরিবর্তিত সংবিধান তৈরি হয়। সংবিধানের এই নতুন সংশোধিত রূপ তাকে ২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের সময় প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার সুযোগ দেয়। তিনি সেই নির্বাচনেও জয়ী হয়েছিলেন। তাই অনেকে মনে করেন এটি প্রতারণামূলক নির্বাচন ছিলে। নির্বাচনের পর রাজধানীতে সহিংস বিক্ষোভের পর, ডেনিস সাসও এনগুয়েসো পুল অঞ্চলে আক্রমণ করে। সেখানে গৃহযুদ্ধের নিনজা বিদ্রোহীরা ঘাঁটি ছিল। তবে এটিকে একটি বিভ্রান্তি বলে মনে করা হত। এর ফলে নিনজা বিদ্রোহীদের পুনরুজ্জীবন ঘটে। তারা ২০১৬ সালের এপ্রিলে সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে আক্রমণ শুরু করে। এর ফলে ৮০,০০০ লোক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যায়। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে সরকার ও বিদ্রোহীদের মধ্যে একটি যুদ্ধবিরতি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। সরকার থাম্ব| ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ১৯৭৯ থেকে ১৯৯২ সাল পর্যন্ত রাষ্ট্রপতি হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন এবং ১৯৯৭ সালের গৃহযুদ্ধের সময় তার বিদ্রোহী বাহিনী রাষ্ট্রপতি প্যাসকেল লিসোবাকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর থেকে ক্ষমতায় রয়েছেন। প্রজাতন্ত্রের সরকার হল একটি আধা-প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যবস্থা। এখানে একজন নির্বাচিত রাষ্ট্রপতি মন্ত্রী পরিষদ বা মন্ত্রিসভা নিয়োগ করেন। সংসদে নির্বাচিত প্রতিনিধিদের মধ্য থেকে প্রধানমন্ত্রীসহ কাউন্সিল নির্বাচিত হয়। ১৯৯০ এর দশকের গোড়ার দিকে দেশটিতে বহুদলীয় রাজনৈতিক ব্যবস্থা রয়েছে; যদিও এই ব্যবস্থাটি রাষ্ট্রপতি ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর দ্বারা প্রবলভাবে আধিপত্যে রয়েছে। তার শাসনামলে অনুষ্ঠিত রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গুরুতর প্রতিযোগিতার অভাব রয়েছে। ডেনিস সাসও এনগুয়েসো তার নিজস্ব কঙ্গোলিজ লেবার পার্টির ( ) পাশাপাশি ছোট দলগুলোর একটি পরিসর দ্বারা সমর্থিত। দুর্নীতি নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা সত্ত্বেও ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর শাসনামল অনেক দুর্নীতির প্রকাশ দেখা গিয়েছে। একটি ফরাসি তদন্ত ফ্রান্সে ১১০ টিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং কয়েক ডজন বিলাসবহুল সম্পত্তি খুঁজে পেয়েছে। ডেনিস সাসও এনগুয়েসো এই আত্মসাতের তদন্তকে "বর্ণবাদী" এবং "ঔপনিবেশিক" বলে নিন্দা করেছেন। ডেনিস ক্রিস্টেল সাসও এনগুয়েসো-এনগুয়েসো ও ডেনিস সাসও এনগুয়েসোর ছেলের নাম পানামা পেপার্সের সহযোগিতায় তালিকায় অন্তর্ভূক্ত ছিল। ২০১৫ সালের ২৭ মার্চ তারিখে ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ঘোষণা করেন, তার সরকার তাকে টানা তৃতীয় মেয়াদে ক্ষমতায় থাকার সুযোগ নিশ্চিত করার জন্য দেশের ২০০২ সালের সংবিধান পরিবর্তন করার জন্য একটি গণভোট করবে।Ross, Aaron (27 March 2015) Congo Republic president says expects referendum over the third term . ২৫ অক্টোবরে সরকার ডেনিস সাসও এনগুয়েসোকে পরবর্তী নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য একটি গণভোট আয়োজন করে। সরকার দাবি করেছে যে প্রস্তাবটি ৯২% ভোটার দ্বারা অনুমোদিত হয়েছিল। উক্ত গণভোটে ৭২% যোগ্য ভোটার অংশগ্রহণ করেছিলেন। গণভোট বর্জনকারী বিরোধীরা বলেছে যে সরকারের পরিসংখ্যান মিথ্যা এবং বিপুল পরিমাণে জাল ভোট দেওয়া হয়েছে। এর ফলে দেশে ও দেশের বাইরে এই নির্বাচন প্রশ্ন বিদ্ধ হয়। এছাড়াও এর ফলে কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে বেসামরিক অস্থিরতা সৃষ্টি হয়। অস্থিরতা কমাতে বিক্ষোভকারীদের উপর পুলিশ গুলি বর্ষণ করে। অক্টোবরে অনুষ্ঠিত গণভোটের আগে বিরোধী দলের সমাবেশে নিরাপত্তা বাহিনীর হাতে কমপক্ষে ১৮ জন নিহত হন। প্রশাসনিক বিভাগ থাম্ব|কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের মানচিত্র তার বারোটি বিভাগ প্রদর্শন করছেকঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১২টি ডিপার্টমেন্টে (বিভাগ) বিভক্ত। বিভাগগুলো কমিউন এবং জেলায় বিভক্ত।With inconsistent figures: এগুলো হলো: সামরিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সশস্ত্র বাহিনী ( ), এছাড়াও কম আনুষ্ঠানিকভাবে Forces armées congolaises বা এর সংক্ষিপ্ত নাম FAC হিসাবে চিহ্নিত। এটি কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সামরিক বাহিনী। তারা কঙ্গোলিজ আর্মি, কঙ্গোলিজ এয়ার ফোর্স, কঙ্গোলিজ মেরিন (নৌবাহিনী) এবং কঙ্গোলিজ ন্যাশনাল জেন্ডারমেরি নিয়ে গঠিত। মানবাধিকার অনেক পিগমি জন্ম থেকেই বান্টুদের সাথে সম্পর্কযুক্ত। অনেকে এই বিষয়টি দাসত্ব হিসাবে উল্লেখ করে থাকে। কঙ্গোলিজ হিউম্যান রাইটস অবজারভেটরি বলে যে, পিগমিদের পোষা প্রাণীর মতোই সম্পত্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়। ২০১০ সালের ৩০ ডিসেম্বরে কঙ্গোলিজ সংসদ আদিবাসীদের অধিকারের প্রচার ও সুরক্ষার জন্য একটি আইন গ্রহণ করে। এই আইনটি আফ্রিকায় এই ধরনের প্রথম আইন এবং এটি গ্রহণ করা মহাদেশের আদিবাসীদের জন্য একটি ঐতিহাসিক উন্নয়ন। মিডিয়া ২০০৮ সালে প্রাথমিক গণমাধ্যম সরকারের মালিকানাধীন ছিল। কিন্তু ব্যক্তিগতভাবে পরিচালিত গণমাধ্যম ধরন তৈরি করা হচ্ছে। এখানে একটি সরকারি মালিকানাধীন টেলিভিশন স্টেশন এবং প্রায় ১০টি ছোট ছোট বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেল রয়েছে। ভূগোল কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বিভিন্ন ধরনের প্রাকৃতিক দৃশ্য রয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে উত্তর নিয়ারির বন্যাকবলিত বনের সাভানা সমভূমি থেকে শুরু করে বিশাল কঙ্গো নদী, মায়াম্বের দুর্গম পর্বতমালা ও বন এবং আটলান্টিক উপকূল বরাবর ১৭০ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকত। বাম|থাম্ব| ব্রাজাভিলের জন্য জলবায়ু চিত্র কঙ্গো সাব-সাহারান আফ্রিকার মধ্য-পশ্চিম অংশে নিরক্ষরেখা বরাবর, ৪° উত্তর এবং ৫°দক্ষিণ অক্ষাংশ এবং ১১° এবং ১৯°পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। এর দক্ষিণে এবং পূর্বে রয়েছে কঙ্গো গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র। এছাড়াও এর পশ্চিমে গ্যাবন, উত্তরে ক্যামেরুন এবং মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র এবং দক্ষিণ-পশ্চিমে অ্যাঙ্গোলার কাবিন্দা অবস্থিত। আটলান্টিক মহাসাগরে এর একটি ছোট উপকূল রয়েছে। এই দেশের রাজধানী ব্রাজাভিল দেশের দক্ষিণে কঙ্গো নদীর তীরে অবস্থিত। নদীর ঠিক অপর পাড়েই গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রাজধানী কিনশাসা অবস্থিত। দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম হচ্ছে একটি উপকূলীয় সমভূমি। এর জন্য প্রাথমিক নিষ্কাশন পথ হল কৌইলো-নিয়ারি নদী। এটি দেশের অভ্যন্তর দক্ষিণ এবং উত্তরে দুটি অববাহিকার মধ্যে একটি কেন্দ্রীয় মালভূমি নিয়ে গঠিত। এখানকার বনগুলো ক্রমবর্ধমান শোষণের চাপের মধ্যে রয়েছে।Map: Situation de l'exploitation forestière en République du Congo . কঙ্গোর একটি ২০১৮ ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ ইন্টিগ্রিটি ইনডেক্স মানে ৮.৮৯/১০ স্কোর ছিল। এটি ১৭২টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১২তম স্থানে রয়েছে। কঙ্গো চারটি ইকো রিজিয়নের মধ্যে রয়েছে। সেগুলো হলো: আটলান্টিক নিরক্ষীয় উপকূলীয় বন, উত্তর-পশ্চিম কঙ্গোলিয়ান নিম্নভূমি বন, পশ্চিম কঙ্গোলিয়ান সোয়াম্প ফরেস্ট এবং পশ্চিম কঙ্গোলিয়ান বন-সাভানা মোজাইক। যেহেতু দেশটি নিরক্ষরেখায় অবস্থিত, তাই সারা বছর জলবায়ু সামঞ্জস্যপূর্ণ থাকে। এই দেশের দিনের গড় তাপমাত্রা আর্দ্র এবং রাত সাধারণত -এর মধ্যে এবং । কঙ্গোর গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত দক্ষিণে নিয়ারি উপত্যকায় দেশের কেন্দ্রীয় অংশে। কঙ্গোর শুষ্ক ঋতু জুন থেকে আগস্ট পর্যন্ত বিস্তৃত। অন্যদিকে দেশের বেশিরভাগ অঞ্চলে আর্দ্র ঋতুতে দুটি সময়ে বৃষ্টিপাতের সর্বোচ্চ পরিমাণ থাকে। এর মধ্যে একটি সময় হচ্ছে মার্চ-মে মাসে এবং আরেকটি হচ্ছে সেপ্টেম্বর-নভেম্বরে। ২০০৬-০৭ সালে, ওয়াইল্ডলাইফ কনজারভেশন সোসাইটির গবেষকরা সাংঘা অঞ্চলের ওয়েসো জেলাকে কেন্দ্র করে ভারী বনাঞ্চলে গরিলাদের নিয়ে গবেষণা করেছেন। তারা ১২৫,০০০ পশ্চিমের নিম্নভূমি গরিলাদের ক্রম অনুসারে একটি সংখ্যার পরামর্শ দেয়, যাদের মানুষের থেকে বিচ্ছিন্নতা মূলত আতিথ্যযোগ্য জলাভূমি দ্বারা সংরক্ষণ করা হয়েছে। অর্থনীতি থাম্ব|কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে মাথাপিছু জিডিপি উন্নয়ন, ১৯৫০ থেকে ২০১৮ ডান|থাম্ব| কঙ্গো রপ্তানি প্রজাতন্ত্রের একটি আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব, ২০১৯ বাম|থাম্ব| কাসাভা কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের একটি গুরুত্বপূর্ণ খাদ্য শস্য। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের অর্থনীতি হল গ্রামীণ কৃষি এবং হস্তশিল্প, প্রধানত পেট্রোলিয়ামের উপর ভিত্তি করে একটি শিল্প খাত, সহায়তা পরিষেবা, এবং বাজেট সমস্যা এবং অতিরিক্ত স্টাফিং দ্বারা চিহ্নিত সরকারের মিশ্রণ। পেট্রোলিয়াম উত্তোলন অর্থনীতির মূল ভিত্তি হিসাবে বনায়নকে প্রতিস্থাপন করেছে। ২০০৮ সালে, তেল খাত জিডিপির ৬৫%, সরকারের রাজস্বের ৮৫% এবং রপ্তানির ৯২% পরিমাণ অবদান রেখেছে।Republic of the Congo World Bank দেশটিতে প্রচুর অব্যবহৃত খনিজ সম্পদও রয়েছে। ১৯৮০ এর দশকের গোড়ার দিকে, দ্রুত ক্রমবর্ধমান তেলের রাজস্ব সরকারকে বড় আকারের উন্নয়ন প্রকল্পে অর্থায়ন করতে সক্ষম করে। দেশটির স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) বার্ষিক গড়ে ৫% বৃদ্ধি পেয়েছে, যা আফ্রিকার সর্বোচ্চ হারগুলোর মধ্যে একটি। সরকার তার পেট্রোলিয়াম আয়ের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ বন্ধক রেখেছে। এই পদক্ষেপ রাজস্বের ঘাটতিতে অবদান রেখেছে। ১২ জানুযারি ১৯৯৪-এ, ফ্রাঙ্ক অঞ্চলের মুদ্রার ৫০% অবমূল্যায়নের ফলে ১৯৯৪ সালে ৪৬% মূল্যস্ফীতি হয়েছিল, কিন্তু তারপর থেকে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস পেয়েছে। থাম্ব|সেলাই শেখা তরুণ মহিলা, Brazzaville বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা, বিশেষ করে বিশ্বব্যাংক এবং আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের সহায়তায় দেশটির অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রচেষ্টা অব্যাহত ছিল। কিন্তু ১৯৯৭ সালের জুন মাসে গৃহযুদ্ধ শুরু হলে সংস্কার কার্যক্রম বন্ধ হয়ে যায়। ১৯৯৭ সালের অক্টোবরে যুদ্ধের শেষে যখন ডেনিস সাসও এনগুয়েসো ক্ষমতায় ফিরে আসেন, তখন তিনি প্রকাশ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার ও বেসরকারিকরণে এগিয়ে যাওয়ার এবং আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলোর সাথে সহযোগিতা পুনর্নবীকরণে আগ্রহ প্রকাশ করেন। যাইহোক, তেলের দাম কমে যাওয়া এবং ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে সশস্ত্র সংঘাত পুনরায় শুরু হওয়ার ফলে অর্থনৈতিক অগ্রগতি খারাপভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। এই সমস্যা প্রজাতন্ত্রের বাজেট ঘাটতিকে আরও খারাপ করেছিল। বর্তমান প্রশাসন একটি অস্বস্তিকর অভ্যন্তরীণ শান্তির সভাপতিত্ব করে এবং ২০০৩ সাল থেকে রেকর্ড-উচ্চ তেলের দাম থাকা সত্ত্বেও পুনরুদ্ধারকে উদ্দীপিত করা এবং দারিদ্র্য হ্রাস করার কঠিন অর্থনৈতিক সমস্যার সম্মুখীন হয়। প্রাকৃতিক গ্যাস এবং হীরাও সাম্প্রতিক প্রধান কঙ্গো রপ্তানি। যদিও কঙ্গোকে ২০০৪ সালে কিম্বারলে প্রক্রিয়া থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল যে তার বেশিরভাগ হীরা রপ্তানি বাস্তবে প্রতিবেশী গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো থেকে পাচার করা হয়েছিল; এটি ২০০৭ সালে পুনরায় দলে ভর্তি হয়। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রেও বড় অব্যবহৃত বেস মেটাল, সোনা, লোহা এবং ফসফেটের মজুদ রয়েছে। দেশটি অর্গানাইজেশন ফর দ্য হারমোনাইজেশন অফ বিজনেস ল ইন আফ্রিকা (ওহাডা) এর সদস্য। কঙ্গো সরকার আমদানির উপর নির্ভরতা কমাতে দক্ষিণ আফ্রিকার কৃষকদের ২০০,০০০ হেক্টর জমি ইজারা দেওয়ার জন্য ২০০৯ সালে একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।Goodspeed, Peter (21 October 2009) Congo hands land to South African farmers . কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের জিডিপি ২০১৪ সালে ৬% বৃদ্ধি পেয়েছে এবং ২০১৫ সালে ৭.৫% বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০১৮ সালে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলোর সংস্থায় যোগ দেয়। পরিবহন থাম্ব| ব্রাজাভিলের মায়া-মায়া বিমানবন্দর কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের পরিবহনের মধ্যে রয়েছে স্থল, বিমান এবং জল পরিবহন। দেশের রেল ব্যবস্থা ১৯৩০-এর দশকে বাধ্যতামূলক শ্রমিকদের দ্বারা নির্মিত হয়েছিল এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চালু রয়েছে। এছাড়াও ১০০০ এর উপরে আছে কিমি পাকা রাস্তা, এবং দুটি প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ( মায়া-মায়া বিমানবন্দর এবং পয়েন্টে-নয়ার বিমানবন্দর ) যেখানে ইউরোপ, আফ্রিকা এবং মধ্যপ্রাচ্যের গন্তব্যে ফ্লাইট রয়েছে। দেশটির আটলান্টিক মহাসাগরে পয়েন্টে-নোয়ারে এবং কঙ্গো নদীর তীরে ব্রাজাভিল এবং ইম্পফন্ডোতে একটি বড় বন্দর রয়েছে। জনসংখ্যা +জনসংখ্যাবছরলক্ষ্য১৯৫০০৮২০০০৩২৫০ কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বিরল জনসংখ্যা দেশের দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে কেন্দ্রীভূত, উত্তরে গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জঙ্গলের বিস্তীর্ণ অঞ্চলগুলো কার্যত জনবসতিহীন। এইভাবে, কঙ্গো আফ্রিকার সবচেয়ে নগরায়িত দেশগুলোর মধ্যে একটি, এর মোট জনসংখ্যার ৭০% কিছু শহুরে অঞ্চলে বাস করে, যথা ব্রাজাভিল, পয়েন্টে-নয়ারে, বা এর আস্তরণে থাকা ছোট শহর বা গ্রামগুলোর মধ্যে একটি।, রেলপথ যা দুটি শহরকে সংযুক্ত করে। গ্রামীণ অঞ্চলে, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে শিল্প ও বাণিজ্যিক কার্যকলাপ দ্রুত হ্রাস পেয়েছে, গ্রামীণ অর্থনীতিগুলোকে সহায়তা এবং জীবিকা নির্বাহের জন্য সরকারের উপর নির্ভরশীল করে রেখেছে।Background Note: কঙ্গো প্রজাতন্ত্র United States Department of State. জাতিগত এবং ভাষাগতভাবে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের জনসংখ্যা বেশ বৈচিত্র্যময়। এথনোলগ দেশে ৬২টি কথ্য ভাষাকে স্বীকৃতি দেয়। কিন্তু এই ভাষাগুলোকে তিনটি বিভাগে বিভক্ত করা যেতে পারে। কঙ্গো হল এই দেশের বৃহত্তম জাতিগোষ্ঠী এবং তাদের সংখ্যা জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক। কঙ্গোর সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য উপগোষ্ঠী হল লারি, ব্রাজাভিল এবং পুল অঞ্চলে এবং ভিলি, পয়েন্টে-নয়ারের আশেপাশে এবং আটলান্টিক উপকূল বরাবর। দ্বিতীয় বৃহত্তম গোষ্ঠী হল টেকে, যারা ব্রাজাভিলের উত্তরে বাস করে, জনসংখ্যার ১৬.৯%। এমবোচি উত্তর, পূর্ব এবং ব্রাজাভিলে বাস করে এবং জনসংখ্যার ১৩.১% গঠন করে। কঙ্গোর জনসংখ্যার ২% পিগমি। ১৯৯৭ সালের যুদ্ধের আগে, প্রায় ৯,০০০ ইউরোপীয় এবং অন্যান্য অ-আফ্রিকানরা কঙ্গোতে বাস করত। তাদের অধিকাংশই ছিল ফরাসি। এই সংখ্যার মাত্র একটি অল্প অংশ অবশিষ্ট আছে।Background Note: কঙ্গো প্রজাতন্ত্র United States Department of State. প্রায় ৩০০ মার্কিন প্রবাসী কঙ্গোতে বসবাস করে। সিআইএ ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক অনুসারে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের লোকেরা মূলত ক্যাথলিক (৩৩.১%), জাগ্রত লুথারান (২২.৩%) এবং অন্যান্য প্রোটেস্ট্যান্ট (১৯.৯%) এর মিশ্রণ। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রে ইসলাম ধর্মের অনুসারী ১.৬%/ মূলত শহুরে কেন্দ্রগুলোতে বিদেশী শ্রমিকদের আগমনের কারণে মুসলিমদের এই সংখ্যা দেখা যায়। স্বাস্থ্য ২০০৪ সালে সরকারি ব্যয় স্বাস্থ্য জিডিপির ৮.৯% ছিল, যেখানে ব্যক্তিগত ব্যয় ছিল ১.৩%। , ১৫ থেকে ৪৯ বছর বয়সীদের মধ্যে এইচআইভি বা এইডস এর প্রকোপ ছিল ২.৮%। ২০০৪ সালে স্বাস্থ্য ব্যয় ছিল মাথাপিছু ৩০ মার্কিন ডলার। জনসংখ্যার একটি বড় অংশ অপুষ্টির শিকার। তাই কঙ্গো-ব্রাজাভিলে অপুষ্টি একটি বড়ো সমস্যা। ২০০০-এর দশকের গোড়ার দিকে এই দেশে প্রতি ১০০,০০০ জনে মাত্র ২০ জন চিকিৎসক ছিলেন। , ২০১০ সালের হিসাবে, প্রতি ১০০,০০০ টি জীবিত জন্মে মাতৃ মৃত্যুর হার ছিল ৫৬০ টি এবং শিশু মৃত্যুর হার ছিল প্রতি ১০০,০০০ টি জীবিত জন্মে ৫৯.৩৪ টি। নারীদের যৌনাঙ্গ বিকৃতকরণ (নারী খৎনা) দেশে বিরল। এটি শুধু এই দেশের দেশের সীমিত ভৌগোলিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ। সংস্কৃতি অসংখ্য জাতিগোষ্ঠী, শিল্পের রূপ এবং রাজনৈতিক কাঠামো এই দেশের একটি সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য প্রকাশ করে। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে পরিচিত সাংস্কৃতিক নিদর্শনের মধ্যে রয়েছে, ভিলি পেরেক ফেটিশ, বেমবে মূর্তি যা অভিব্যক্তিতে পূর্ণ; পুনু এবং কুয়েলের মুখোশ, কোটা রেলিকুয়ারি, টেকে ফেটিশ, এবং স্মৃতিস্তম্ভ সমাধি সহ কবরস্থানগুলো এই বৈচিত্র্যের উদাহরণ। লারি জনগোষ্ঠীরও রয়েছে অনন্য নিদর্শন। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের যথেষ্ট উপনিবেশিক স্থাপত্য ঐতিহ্য রয়েছে। দেশটি এসব নিদর্শন সংরক্ষণ করছে। ব্রাজাভিলে বিভিন্ন পুরোনো স্থাপত্য কর্মের পুনরুদ্ধারের কাজ চলছে। উদাহরণস্বরূপ, সেন্ট-অ্যান ডু কঙ্গোর ব্যাসিলিকার নাম উল্লেখ করা যেতে পারে। এটি ২০১১ সালে সম্পন্ন হয়েছিল। যোগাযোগ নেটওয়ার্কের সমস্যার কারণে দেশটি ঐতিহ্যগত পর্যটন গড়ে তুলতে প্রস্তুত নয়। এটি পয়েন্ট নোয়ার এবং ব্রাজাভিলে তার হোটেল এবং সম্পর্কিত পর্যটন সুবিধাগুলো সমর্থন করে এমন নেটওয়ার্ককে উন্নত করার জন্য কাজ করছে। অনেক সাইট ওভারল্যান্ড ভিজিটে পৌঁছানো কঠিন। দক্ষিণের সবচেয়ে জনবহুল এবং উন্নত অবস্থানগুলোর মধ্যে কয়েকটি প্রায়ই সবচেয়ে কম অ্যাক্সেসযোগ্য। উদাহরণস্বরূপ, বিশাল ছাইলু পর্বতমালা পরিদর্শন করা প্রায় অসম্ভব। কলা ফ্রাঙ্কো-কঙ্গোর র‍্যাপার পাসি এখানে বেশ কয়েকটি হিট অ্যালবাম প্রকাশ করেছেন। যেমন: টেম্পটেশনস, বিখ্যাত গান "আই জাপ অ্যান্ড আই মেট"। তার কাজ আন্তর্জাতিক ভাবে সম্প্রচারিত হয়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে রয়েছে এম'পাসি, প্রাক্তন গ্রুপের গায়ক মেলগ্রুভ, আর্সেনিকের র‍্যাপার ক্যালবো, নেগের মারনসের বেন-জে, মিস্টিক, আরসিএফএ, গ্রুপ বিসো না বিসো এবং ক্যাসিমির জাও। কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের বেশ কয়েক জন লেখক আফ্রিকা এবং ফরাসি-ভাষী বিশ্বের অন্য কোথাও স্বীকৃত হয়েছেন। যাদের মধ্যে রয়েছেন অ্যালাইন মাব্যানকৌ, জিন-ব্যাপটিস্ট তাতি লুটার্ড, জ্যানেট বালো টিচিচেল, হেনরি লোপেস, ল্যাসি এমবাউইটি, এবং চিকায়া উ তামসি। এই দেশের শিল্পীরা একটি চলচ্চিত্র শিল্প গড়ে তোলার জন্য সংগ্রাম করেছেন। ১৯৭০-এর দশকে একটি আশাব্যঞ্জক সূচনার পরে, অশান্ত রাজনৈতিক পরিস্থিতি সিনেমা হলগুলো বন্ধ করে দেয় এবং চলচ্চিত্র নির্মাণকে কঠিন করে তোলে। প্রেক্ষাগৃহে বিতরণের জন্য ফিচার ফিল্ম তৈরির পরিবর্তে, দেশটির চলচ্চিত্র নির্মাতারা সাধারণত সরাসরি ইন্টারনেটে তাদের ভিডিও প্রযোজনাগুলো স্ট্রিম করে। অস্থিতিশীল রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং যুদ্ধের কারণে কঙ্গোলিজ সংস্কৃতি, শিল্প এবং মিডিয়া বিনিয়োগের অভাবের শিকার হয়েছে। শিক্ষা থাম্ব|শ্রেণীকক্ষে স্কুল শিশু, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ১৯৯১ সালের তুলনায় ২০০২-০৫ সালে স্থূল অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জিডিপি) সরকারি ব্যয় কম ছিল। পাবলিক শিক্ষা তাত্ত্বিকভাবে বিনামূল্যে এবং অনূর্ধ্ব-১৬ বছর বয়সীদের জন্য বাধ্যতামূলক,Refworld | 2008 Findings on the Worst Forms of Child Labor – Congo, Republic of the . কিন্তু বাস্তবে, খরচ বিদ্যমান। ২০০৫ সালে সাকুল্যে প্রাথমিক তালিকাভুক্তির হার ছিল ৪৪%, যা ১৯৯১ সালে ৭৯% থেকে একটি উল্লেখযোগ্য হ্রাস। নয় থেকে ষোল বছর বয়সের মধ্যে শিক্ষা বাধ্যতামূলক। প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ছয় বছর এবং মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের সাত বছর পূর্ণ করা শিক্ষার্থীরা স্নাতক পায়। দেশে এমন বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে যেখানে শিক্ষার্থীরা তিন বছরে স্নাতক ডিগ্রি এবং পাঁচ বছরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করতে পারে। মারিয়েন এনগুয়াবি বিশ্ববিদ্যালয় মেডিসিন, আইন এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কোর্স অফার করে। এটি দেশের একমাত্র পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়। সমস্ত স্তরে নির্দেশনা ফরাসি ভাষায় এবং শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পূর্ণরূপে ফরাসি সিস্টেমের মডেল। সাহিত্য কঙ্গোলিজ লেখক অ্যালেন মাবাঙ্কো ২০০৬ সালে "মেমোয়ার্স অফ আ পোর্কুপাইন" নামে একটি বিখ্যাত উপন্যাস প্রকাশ করেছিলেন। এর ঘটনা কঙ্গোর একটি গ্রামে সংঘটিত হয়। আরও দেখুন কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের রূপরেখা কঙ্গো প্রজাতন্ত্রের সূচক-সম্পর্কিত নিবন্ধ তথ্যসূত্র আরও পড়ুন Maria Petringa, Brazza, A Life for Africa (2006) বহিঃসংযোগ সরকার প্রজাতন্ত্রের প্রেসিডেন্সি রাজ্যের প্রধান এবং মন্ত্রিসভার সদস্যরা সাধারণ বিবিসি নিউজ থেকে দেশের প্রোফাইল কঙ্গো প্রজাতন্ত্র। ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক। কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। ইউসিবি লাইব্রেরি গভপাবস থেকে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র জাতিসংঘ মানবাধিকার কাউন্সিলের সার্বজনীন পর্যায়ক্রমিক পর্যালোচনা, ৬ মে ২০০৯ দ্বারা কঙ্গোর পর্যালোচনা। IRIN - কঙ্গো থেকে মানবিক সংবাদ এবং বিশ্লেষণ পর্যটন বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:প্রাক্তন ফরাসি উপনিবেশ বিষয়শ্রেণী:মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:উদ্ধৃতি শৈলীতে ফরাসি ভাষার উৎস (fr) বিষয়শ্রেণী:এইচঅডিওর মাইক্রোবিন্যাসের সাথে নিবন্ধসমূহ বিষয়শ্রেণী:ফরাসি ভাষার লেখা থাকা নিবন্ধ বিষয়শ্রেণী:অপর্যালোচিত অনুবাদসহ পাতা বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ওপেকের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
কোস্টা রিকা
https://bn.wikipedia.org/wiki/কোস্টা_রিকা
থাম্ব|274x274পিক্সেল|কোস্টারিকার কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাসের মানচিত্র কোস্টা রিকা (স্পেনীয়: Costa Rica কোস্তা রিকা) দক্ষিণ আমেরিকা মহাদেশের এক‌টি রাষ্ট্র। এর উত্তরে নিকারাগুয়া, দক্ষিণ-দক্ষিণপূর্বে পানামা, পশ্চিমে ও দক্ষিণে প্রশান্ত মহাসাগর, এবং পূর্ব দিকে ক্যারিবিয়ান সাগর। কোস্টা রিকা পৃথিবীর প্রথম দেশ যেটি তার সেনাবাহিনীর অবসান ঘটিয়েছে। ইতিহাস রাজনীতি কোস্টা রিকাতে একটি গণপ্রজাতন্ত্রী সরকার ব্যবস্থা বিদ্যমান। রাষ্ট্রপতি যুগপৎ রাষ্ট্র ও সরকারের প্রধান। দেশটিতে একটি এককাক্ষিক আইনসভা বিদ্যমান যার সদস্যসংখ্যা ৫৭। ভোটাধিকার ১৮ বছর বা তদুর্ধ্ব বয়সের নারী-পুরুষ সবার জন্য উন্মুক্ত। বর্তমান সংবধানটি ১৯৪৯ সালের ৯ই নভেম্বর গৃহীত হয়। সুপ্রিম কোর্ট দেশের সর্বোচ্চ বিচারালয়। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ কোস্টা রিকা দেশটির নিজস্ব কোনও সেনাবাহিনী নেই । এটিই পৃথিবীর একমাত্র দেশ যার কোনও সেনাবাহিনী নেই এবং দেশটির সমস্ত নিরাপত্তা দায়িত্ব দেশটির পুলিশ বাহিনীর হাতে ন্যাস্ত । ভূগোল অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি তথ্যসূত্র আরও দেখুন বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:কোস্টা রিকা বিষয়শ্রেণী:মধ্য আমেরিকা বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টান রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:স্পেনীয় ভাষী রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:উত্তর আমেরিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ওইসিডি সদস্য বিষয়শ্রেণী:মধ্য আমেরিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ বিষয়শ্রেণী:প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৮২১-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:১৮২১-এ উত্তর আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত
কোত দিভোয়ার
https://bn.wikipedia.org/wiki/কোত_দিভোয়ার
থাম্ব|261x261পিক্সেল|আবিদজান কোত দিভোয়ারের বৃহত্তম শহর এবং এর অর্থনৈতিক রাজধানী। কোত দিভোয়ার ( কোৎ দিভ়ুয়ার্‌ অর্থাৎ "হস্তিদন্তের উপকূল") বা আইভরি কোস্ট ( আইভরি কোস্ট) পশ্চিম আফ্রিকার একটি রাষ্ট্র। এই দেশের রাজধানীর নাম ইয়ামুসুক্রো (অর্থনৈতিক) ও আবিজান (প্রশাসনিক)। কোত দিভোয়ার বা আইভরি কোস্টের আয়তন ৩২২,৪৬২ বর্গ কিমি। এর পশ্চিমে লাইবেরিয়া ও মালি, উত্তরে মালি ও বুর্কিনা ফাসো, পূর্বে ঘানা, এবং দক্ষিণে গিনি উপসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে এদেশের জনসংখ্যা ছিলো ১৫,৩৬৬,৬৭২। .। ২০০৮ সালের অনুমিত জনসংখ্যা হলো ১৮,৩৭৩,০৬০। ইতিহাস রাজনীতি প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল কোত দিভোয়ার বা আইভরি কোস্টের আয়তন ৩২২,৪৬২ বর্গ কিমি। এর পশ্চিমে লাইবেরিয়া ও মালি, উত্তরে মালি ও বুর্কিনা ফাসো, পূর্বে ঘানা, এবং দক্ষিণে গিনি উপসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগর অবস্থিত। ১৯৯৮ সালে এদেশের জনসংখ্যা ছিলো ১৫,৩৬৬,৬৭২।[৭]। ২০০৮ সালের অনুমিত জনসংখ্যা হলো ১৮,৩৭৩,০৬০। অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি Présidence de la République de Côte d'Ivoire কোত দিভোয়ার বা আইভরি কোস্টের রাষ্ট্রপতির ওয়েবসাইট। জাপানে কোত দিভোয়ার দূতাবাস সরকারি তথ্য এবং লিঙ্ক। রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Country Profile from BBC News Cote-D'Ivoire from the Encyclopaedia Britannica Cote d'Ivoire from UCB Libraries GovPubs সংবাদ allAfrica - Côte d'Ivoire news headline links Abidjan.Net news forum links পর্যটন অন্যান্য Cote D'Ivoire literature Map of Côte d'Ivoire Parti Ivoirien du Peuple Akwaba in Ivory Coast French intervention in Ivory Coast 2002-2003 Crisis briefing on Ivory Coast's recovery from war from Reuters AlertNet বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:কোত দিভোয়ার বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:পশ্চিম আফ্রিকার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
ক্রোয়েশিয়া
https://bn.wikipedia.org/wiki/ক্রোয়েশিয়া
থাম্ব|226x226পিক্সেল|স্যাটেলাইটে ধারণকৃত ক্রোয়েশিয়ার ছবি ক্রোয়েশিয়া (, ক্রোয়েশীয় ভাষায় Hrvatska হ্র্‌ভ়াৎস্কা) ইউরোপ মহাদেশের একটি রাষ্ট্র। এর সরকারি নাম প্রজাতন্ত্রী ক্রোয়েশিয়া (Republika Hrvatska রেপুব্লিকা হ্র্‌ভ়াৎস্কা)। এটির রাজধানী জাগ্রেব। দেশটির আয়তন ৫৬,৫৯৪ বর্গ কি.মি. (২১,৮৫১ বর্গ মাইল) এবং জনসংখ্যা ৪.২৮ মিলিয়ন, যাদের অধিকাংশই রোমান ক্যাথলিক। ক্রোটরা ৬ষ্ঠ শতকে এখানে আসে এবং নবম শতাব্দির মধ্যেই তারা অঞ্চলটিকে দুইটি জমিদারিত্বের মাধ্যমে সুসংগঠিত করে তোলে। ৯২৫ খ্রিষ্টাব্দে তোমিসলাভ প্রথম রাজা হিসেবে আভির্ভূত হন এবং তিনি ক্রোশিয়াকে রাজ্যে উন্নীত করেন, যেটি প্রায় দুই শতকেরও বেশি সময় ধরে তার সার্বভৌমত্ব ধরে রেখেছিল। রাজা চতুর্থ পিটার ক্রেসিমির এবং দিমিতার জভনমিরির আমলে দেশটি তার উন্নতির চরম শিখরে পৌঁছায়। ইতিহাস হাব্সবুর্গ সাম্রাজ্য এবং অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি (১৫৩৮-১৯১৮) যুগোস্লাভিয়া (১৯১৮-১৯৯১) স্বাধীনতা (১৯৯১-বর্তমান) ক্রোয়েশিয়ার রাজনীতি ক্রোয়েশিয়ার রাজনীতি একটি সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাঠামোতে পরিচালিত হয়। প্রধানমন্ত্রী একটি বহুদলীয় ব্যবস্থাতে সরকার প্রধান। নির্বাহী ক্ষমতা সরকারের হাতে এবং আইন প্রণয়ন ক্ষমতা ক্রোয়েশীয় সংসদ বা সাবর-এর হাতে ন্যস্ত। বিচার ভাগ নির্বাহী ও আইন প্রণয়ন বিভাগ হতে স্বাধীন। ক্রোয়েশিয়ার বর্তমান সংবিধান ১৯৯০ সালের ২২ ডিসেম্বর গৃহীত হয়। দেশটি ১৯৯১ সালের ২৫ জুন প্রাক্তন ইউগোস্লাভিয়া থেকে স্বাধীনতা ঘোষণা করে। ভূগোল অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:ইউরোপের রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:১৯৯১-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:ক্রোয়েশিয়া বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:থ্রি সিস ইনিশিয়েটিভের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ভূমধ্যসাগরীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:বলকান রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
সাইপ্রাস
https://bn.wikipedia.org/wiki/সাইপ্রাস
সাইপ্রাস ( ; }} (), আনুষ্ঠানিকভাবে সাইপ্রাস প্রজাতন্ত্র (, ) ভূমধ্যসাগরের একটি দ্বীপ দেশ। ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপগুলোর মধ্যে তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ এটি। এর পশ্চিমে গ্রিস, পূর্বে লেবানন, সিরিয়া এবং ইসরাইল, উত্তরে তুরস্ক ও দক্ষিণে মিশর। ভৌগোলিক দিক দিয়ে সাইপ্রাস ইউরোপ মহাদেশের অন্তর্গত হলেও দেশটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অন্যতম সদস্য। ইতিহাস সাইপ্রাসকে বলা হয় দেবী আফ্রোদিতির জন্মস্থান। এখানে মানব বসতির আদিভূমি হচ্ছে দক্ষিণ উপকূলীয় এলাকা ‘ইতোকরেমনস’। খ্রিষ্টজন্মের ১০ হাজার বছর আগে এখানে শিকারের মাধ্যমে জীবিকা নির্বাহকারীদের বসতি ছিল বলে প্রমাণ পাওয়া যায়। তারা খ্রিষ্টপূর্ব আট হাজার ২০০ বছর আগে স্থায়ীভাবে গ্রামীণ জীবনের আওতায় আসে। এখানে প্রথম সভ্য মানুষ আসে আনাতোলিয়া থেকে খ্রিষ্টপূর্ব ২ হাজার ৪০০ বছর আগে। আর গ্রিকরা আসে খ্রিষ্টপূর্ব এক হাজার ৬০০ বছর আগে। এর পর আশপাশের বিভিন্ন জায়গা থেকে বিভিন্ন সময় নানা জাতি ও বর্ণের লোক এখানে এসেছে। সাইপ্রাস ইতিহাসের বিভিন্ন সময় গ্রিক, রোমান, পারসীয় এবং মিসরীয় শাসকদের অধীনে শাসিত হয়। ৩৯৫ সালে এ দ্বীপটি বাইজানটাইন সাম্রাজ্যের অধীনে চলে যায়। আরবরা এটি দখল করে ৬৪৩ সালে। ১১৯১ সালে তৃতীয় ক্রুসেডের সময় এটি দখল করে ইংল্যান্ডের রাজা রিচার্ড। ১৫৩৯ সালে অটোমানরা এটি দখলে নেয়। ১৮৭৮ সালে দ্বীপটি ব্রিটেনের একটি সামরিক ঘাঁটিতে পরিণত হয়। ১৯২৫ সালে দ্বীপটিকে ব্রিটিশরা নিজেদের একটি কলোনি বলে দাবি করে। অবশেষে ১৯৬০ সালের ১৬ আগস্ট এক চুক্তির মাধ্যমে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। রাজনীতি সাইপ্রাসের রাজনীতি একটি রাষ্ট্রপতিশাসিত, বহুদলীয়, প্রতিনিধিত্বমূলক গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কাঠামোয় সংঘটিত হয়। রাষ্ট্রপতি হলেন একাধারে রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান। সরকারের হাতে নির্বাহী ক্ষমতা ন্যস্ত। সরকার ও আইনসভা একত্রে আইন প্রণয়নের দায়িত্বে নিয়োজিত। বিচার বিভাগ নির্বাহী ও আইন প্রণয়ন বিভাগ হতে স্বাধীন। সাইপ্রাস বর্তমানে একটি বিভক্ত রাষ্ট্র। ১৯৭০-এর দশক থেকে দ্বীপের উত্তরের এক-তৃতীয়াংশ নিয়ন্ত্রণ করছে তুর্কি সাইপ্রিটরা। এই ঘটনাটি সাইপ্রাসের রাজনীতিতে আজ অবধি গভীর প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। সরকার পদ্ধতি দেশটির সরকারব্যবস্থা হচ্ছে রাষ্ট্রপতিশাসিত। দেশটির সরকার ও রাষ্ট্রপ্রধান হচ্ছেন প্রেসিডেন্ট। যিনি প্রতি পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হন। নির্বাহী বিভাগ পরিচালনা করেন সরকার, আইন বিভাগ পরিচালনা করেন হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভস এবং বিচার বিভাগ সম্পূর্ণ স্বাধীন। ১৯৬০ সালে প্রণীত সংবিধানে বলা হয়, দেশটির প্রেসিডেন্ট হবেন অবশ্যই একজন গ্রিক সাইপ্রিয়ট বা জাতিগত গ্রিক এবং তুর্কি সাইপ্রিয়ট একজন হবেন ভাইস প্রেসিডেন্ট যিনি ওই গোষ্ঠীর প্রতিনিধিদের দ্বারা নির্বাচিত হবেন। ১৯৮৩ সালে তুর্কি জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত অংশ স্বাধীনতা ঘোষণা করে। তবে এ পর্যন্ত তুরস্ক ছাড়া আর কোনো দেশে তাদের সমর্থন করেনি। দেশটির হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের সদস্যসংখ্যা ৫৯ জন। এর মধ্যে ৫৬ জন সরাসরি নির্বাচিত হন এবং বাকি তিনটি আসন মেরোনাইট, আর্মেনিয়ান এবং ল্যাটিন সংখ্যালঘুদের জন্য সংরক্ষিত। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ সাইপ্রাস এর রাজধানী নিকোসিয়া। এই শহরটি দুই ভাগে বিভক্ত। ভূগোল থাম্ব|সাইপ্রাসে একটি তামার খনি। প্রাচীনকালে সাইপ্রাস ছিল তামার প্রধান উৎস। এখানকার আবহাওয়া সাধারণত গরম এবং শুষ্ক। নভেম্বর থেকে মার্চ অর্থাৎ শীতকাল হচ্ছে চাষাবাদের মৌসুম। শীতের এ মৌসুমে এখানে যথেষ্ট বৃষ্টিপাত হয়। শীতকালে এখানে নানা ধরনের সাইক্লোনও দেখা দেয়। এ সাইক্লোনগুলো উৎপন্ন হয় ভূমধ্যসাগরে। আর মে থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অর্থাৎ গ্রীষ্মকালে এখানকার আবহাওয়া থাকে শুষ্ক। এখানকার গড় বৃষ্টিপাত ৫৫০ মিলিমিটার। গড় তাপমাত্রা ২০ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড। তাপমাত্রার এ অবস্থা দেশটিতে বিশাল পর্যটন শিল্প বিকাশে ভূমিকা রেখেছে। অর্থনীতি সাইপ্রাসের অর্থনীতি দক্ষিণের সাইপ্রীয় গ্রিক সরকার নিয়ন্ত্রিত এলাকা এবং উত্তরের তুর্কি সাইপ্রীয় নিয়ন্ত্রিত এলাকার দ্বিবিধ অর্থনীতি নিয়ে গঠিত। গ্রিক নিয়ন্ত্রিত এলাকাটির অর্থনীতি উন্নত বলে স্বীকৃত। আইএমএফ’র মতে, দেশটির মাছাপিছু আয় হচ্ছে ২৮ হাজার ৩৮১ ডলার। তারা অর্থনীতির সব ক্ষেত্রেই ইউরোপীয় ইউনিয়নের নীতি অনুসরণ করছে। ২০০৭ সালের ১লা মে থেকে তারা ইউরো মুদ্রাকে তাদের নিজস্ব মুদ্রা হিসেবে গ্রহণ করে। এ ছাড়া দেশটির আয়ের প্রধান খাতগুলো হচ্ছে পর্যটন, শিক্ষা, বাণিজ্য ইত্যাদি। পর্যটন দেশটির আয়ের অন্যতম উৎস পর্যটন। সাইপ্রাসে প্রতি বছর গড়ে ২৪ লাখ বিদেশী পর্যটক আসেন। ২০০৬ সালে মোট জিডিপি’র ১০ দশমিক ৭ শতাংশ এসেছে পর্যটন শিল্প থেকে। ১ লাখ ১৩ হাজারের বেশি লোকের অর্থাৎ দেশের মোট চাকরীজীবীর ২৯ দশমিক ৭ শতাংশের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা রয়েছে এ শিল্পে। ওয়ার্ল্ড ইকনোমিক ফোরাম এর ২০০৭ সালের সূচকে পর্যটন শিল্পে সাইপ্রাসের অব¯'ান বিশ্বে ২০তম। দ্য সাইপ্রাস ট্যুরিজম অর্গানাইজেশন (সিটিও) নামের একটি সংগঠন সরকারের পক্ষে সাইপ্রাসের পর্যটন শিল্পের তত্ত্বাবধানে করে থাকে। প্রতিরক্ষাব্যবস্থা দেশটির প্রধান প্রতিরক্ষা প্রতিষ্ঠান হচ্ছে ‘সাইপ্রিয়ট ন্যাশনাল গার্ড’। স্থল, নৌ এবং বিমানবাহিনীর সমন্বয়ে এটি একটি যৌথ প্রতিরক্ষা বাহিনী। সাইপ্রিয়ট ন্যাশনাল গার্ডের বর্তমান প্রধান হচ্ছেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল কনস্টান্টিনস বিসবিকাস। জনসংখ্যা ধর্ম গ্রিক সাইপ্রিয়টদের বেশিরভাগই গ্রিক অর্থোডক্স চার্চের সদস্য এবং তুর্কি সাইপ্রিয়টদের বেশিরভাগই মুসলিম। ইউরোবেরোমিটার ২০০৫ অনুসারে, সাইপ্রাস হচ্ছে ইউরোপের প্রধান পাঁচটি ধার্মিক দেশের একটি। এ ছাড়া ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত যে পাঁচটি দেশে রাষ্ট্রধর্ম আছে সাইপ্রাস তাদেরও একটি। সাইপ্রাসের রাষ্ট্রধর্ম হচ্ছে ‘সাইপ্রিয়ট অর্থোডক্স চার্চ’। শিক্ষা সাইপ্রাসের প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষাব্যবস্থা অত্যন্ত উন্নত। সরকারি ও বেসরকারি উভয় ক্ষেত্রেই তা প্রযোজ্য। সাইপ্রাসের মোট জিডিপি’র ৭ শতাংশ ব্যয় হয় শিক্ষার জন্য। ইউরোপীয় ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলোর ক্ষেত্রে যা তৃতীয় সর্বোচ্চ। সাইপ্রাসে একাধিক বিশ্বমানের বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। তবে সাইপ্রাসের উচ্চশিক্ষা গ্রহণকারীদের অনেকেই গ্রিস, ব্রিটেন, তুরস্ক, ইউরোপের অন্যান্য দেশ এবং উত্তর আমেরিকার বিভিন্ন দেশ থেকে উচ্চশিক্ষা গ্রহণ করে থাকে। সংস্কৃতি খেলাধুলা, গান, সাহিত্য, স্বাস্থ্যব্যবস্থা, টেলিযোগাযোগ পদ্ধতি এবং পরিবহনব্যবস্থাসহ জীবনের নানা ক্ষেত্রে সাইপ্রিয়টদের রয়েছে সম্পূর্ণ নিজস্ব ঐতিহ্য। তথ্যসূত্র টীকা বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:ইউরোপের রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:সাইপ্রাস বিষয়শ্রেণী:কমনওয়েলথ প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ভূমধ্যসাগরীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:একাধিক দাপ্তরিক ভাষা সহ ইউরোপের দেশ বিষয়শ্রেণী:পূর্ব ভূমধ্যসাগরীয় বিষয়শ্রেণী:আন্তর্জাতিক দ্বীপ বিষয়শ্রেণী:দ্বীপ রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:এশিয়ার দ্বীপ বিষয়শ্রেণী:ইউরোপের দ্বীপ বিষয়শ্রেণী:ভূমধ্যসাগরীয় দ্বীপ বিষয়শ্রেণী:কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য বিষয়শ্রেণী:মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:নিকট প্রাচ্যের রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:পশ্চিম এশিয়ার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:এশিয়ার রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
চেক প্রজাতন্ত্র
https://bn.wikipedia.org/wiki/চেক_প্রজাতন্ত্র
চেক প্রজাতন্ত্র,(সংক্ষিপ্ত নাম চেকিয়া এবং ঐতিহাসিকভাবে বোহেমিয়া নামে পরিচিত) মধ্য ইউরোপের একটি ভূবেষ্টিত রাষ্ট্র। দেশটির দক্ষিণে অস্ট্রিয়া, পশ্চিমে জার্মানি, উত্তর-পূর্বে পোল্যান্ড এবং দক্ষিণ-পূর্বে স্লোভাকিয়া অবস্থিত। চেক প্রজাতন্ত্র দেশটিতে রয়েছে পাহাড়ি ভূমি যা প্রায় অঞ্চলে বিস্তৃত এবং এর অধিকাংশেই নাতিশীতোষ্ণ মহাদেশীয় ও মহাসাগরীয় জলবায়ু বিদ্যমান। দেশের মধ্যভাগে অবস্থিত বৃহত্তম শহর ও রাজধানীর নাম প্রাগ। অন্যান্য শহরের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বার্নো ও অস্ত্রাভা। নবম শতাব্দীর শেষের দিকে মোরাভিয়ার অধীনে বোহেমিয়ার ডাচি প্রতিষ্ঠিত হয়। পূর্বে ১০০২ সালে রোমান সাম্রাজ্যের একটি ইম্পেরিয়াল রাজ্য হিসাবে এটি স্বীকৃত হয়েছিলো এবং ১১৯৮ সালে এটি একটি রাজ্যে পরিণত হয়। ১৫২৬ সালে মোহাচের যুদ্ধের পর, বোহেমিয়ার পুরো সাম্রাজ্যটি ধীরে ধীরে হাবসবার্গ রাজতন্ত্রের সাথে একীভূত হয়। এসময় প্রোটেস্ট্যান্ট বোহেমিয়ান বিদ্রোহ ত্রিশ বছরব্যাপী হোয়াইট মাউন্টেনের যুদ্ধের সূত্রপাত ঘটায়। যুদ্ধের পর হাবসবার্গরা তাদের শাসনকে সুসংহত করে। ১৮০৬ সালে রোমান সাম্রাজ্যের বিলুপ্তির সাথে সাথে এসব ভূমি অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে, চেক ভূমি আরও শিল্পোন্নত হয়ে ওঠে এবং ১৯১৮ সালে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির পতনের পরে এর বেশিরভাগ অংশ প্রথম চেকোস্লোভাক প্রজাতন্ত্রের অংশ হয়ে ওঠে। চেকোস্লোভাকিয়া মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের একমাত্র দেশ ছিল যা আন্তঃযুদ্ধকালীন সময়কালে সংসদীয় গণতন্ত্র বজায় রেখেছিল। ১৯৩৮ সালের মিউনিখ চুক্তির পর নাৎসি জার্মানি পদ্ধতিগতভাবে চেক ভূখণ্ডের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ করে। ১৯৪৫ সালে চেকোস্লোভাকিয়া পুনরুদ্ধার করা হয় এবং ১৯৪৮ সালে একটি অভ্যুত্থানের পরে এটি পূর্ব ব্লকের কমিউনিস্ট রাষ্ট্রে পরিণত হয়। সরকার ও অর্থনীতির উদারীকরণের প্রচেষ্টা ১৯৬৮ সালের প্রাগ বসন্তের সময় সোভিয়েত-নেতৃত্বাধীন আগ্রাসনের মাধ্যমে দমন করা হয়। ১৯৮৯ সালের নভেম্বরের মখমল বিপ্লব দেশে কমিউনিস্ট শাসনের অবসান ঘটায়। ১ জানুয়ারি ১৯৯৩ তারিখে চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙে যায় এবং এর সাংবিধানিক রাজ্যগুলি চেক প্রজাতন্ত্র এবং স্লোভাকিয়ার স্বাধীন রাষ্ট্রে পরিণত হয়। চেক প্রজাতন্ত্র একটি একক সংসদীয় গণতন্ত্র দেশ এবং একটি অগ্রসর, উচ্চ আয়ের সামাজিক বাজার অর্থনীতির উন্নত দেশ। ইউরোপীয় সামাজিক মডেল, সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা এবং বেতন-মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসহ এটি একটি কল্যাণ রাষ্ট্র। এটি জাতিসংঘের অসমতা-সামঞ্জস্যমূলক মানব উন্নয়ন সূচকে ১২তম এবং বিশ্বব্যাংকের মানব মূলধন সূচকে ২৪তম স্থানে রয়েছে। এটি ৯ম নিরাপদ ও সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশ এবং গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় ৩১তম। চেক প্রজাতন্ত্র ন্যাটো, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি), ইউরোপীয় নিরাপত্তা ও সহযোগিতা সংস্থা (ওএসসিই) এবং কাউন্সিল অব ইউরোপ (সিওই) এর সদস্য। নাম প্রথাগত ইংরেজি নাম বোহেমিয়া শব্দটি ল্যাটিন বয়োহেমাম () থেকে এসেছে যার অর্থ বোইই (Boii;গ্যালিক উপজাতি) দের বাড়ি। বর্তমান ইংরেজী নামটি (Czech) এই অঞ্চলের সাথে যুক্ত পোলিশ নৃবিজ্ঞান থেকে এসেছে, যা শেষ পর্যন্ত এসেছে চেক ভাষার শব্দ চেক() থেকে। নামটি এসেছে স্লেভিয় উপজাতি ) থেকে এবং কথিত আছে তাদের নেতা চেক (Čech) এর নাম থেকে এই নামের উৎপত্তি, যিনি রিপ মাউন্টেনে(Říp Mountain) বসতি স্থাপনের জন্য তাদের বোহেমিয়াতে নিয়ে আসেন। শব্দটির ব্যুৎপত্তি খুঁজে পাওয়া যায় প্রোটো-স্লেভীয় মূলশব্দ এ, যার অর্থ "জনগণের সদস্য(kinsman)", এইভাবে এটি চেক শব্দ (একজন ব্যক্তি) এর অনুরূপ উৎপত্তি বহন করে। ঐতিহ্যগতভাবে দেশটি তিনটি অঞ্চলে বিভক্ত ছিলো: পশ্চিমে বোহেমিয়া(), পূর্বে মোরাভিয়া() এবং উত্তর-পূর্বে চেক সিলেসিয়া (; ঐতিহাসিক সিলেসিয়ার ক্ষুদ্র , দক্ষিণ-পূর্ব অংশ যার অধিকাংশই এখন পোল্যান্ডের অন্তর্ভুক্ত)। দেশটি ১৪শ শতাব্দী থেকে বোহেমিয় সাম্রাজ্যের ভূমি নামে পরিচিত ছিলো। এছাড়াও বিভিন্ন সময় এটি অন্য নামেও পরিচিত ছিলো, যেমন: চেক/বোহেমিয় ভূমি, বোহেমিয় সাম্রাজ্য, চেকিয়া, সেন্ট ওয়েনচেসলাস সাম্রাজ্যের ভূমি। ১৯১৮ সালে অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সাম্রাজ্যের পতনের পর যখন দেশটি তার স্বাধীনতা ফিরে পায় তখন একই দেশে চেক ও স্লোভাক জাতির মিলনকে প্রতিফলিত করার জন্য দেশটির নাম রাখা হয় চেকোস্লোভাকিয়া। ১৯৯২ সালে চেকোস্লোভাকিয়া বিলুপ্ত হওয়ার পর চেকের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ইংরেজি সংক্ষিপ্ত নাম হিসেবে চেকিয়া সুপারিশ করে। এই রূপ তখন গৃহীত না হওয়ায় দীর্ঘ নাম চেক প্রজাতন্ত্র সমস্ত পরিস্থিতিতে ব্যবহৃত হতে থাকে। ২০১৬ সালে চেক সরকার দাপ্তরিক সংক্ষিপ্ত নাম হিসেবে চেকিয়া নাম অনুমোদন করে। সংক্ষিপ্ত নামটি জাতিসংঘ কর্তৃক তালিকাভুক্ত হয়েছে এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন, সিআইএ এবং গুগল ম্যাপসের মতো অন্যান্য সংস্থা দ্বারাও এটি ব্যবহৃত হয়। ভৌগোলিক পরিবেশ থাম্ব|ভূসংস্থান মানচিত্র চেক প্রজাতন্ত্র মূলত ৪৮° উত্তর থেকে ৫১° উত্তর অক্ষাংশ এবং ১২° পূর্ব থেকে ১৯° পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। দেশটির পশ্চিমদিকের অংশ বোহেমিয়া এলবে ও ভলতাভা নদীর অববাহিকার সমন্বয়ে গঠিত, যা নিচু পর্বতমালা যেমন, সুদেতের ক্রোকনোস অংশ দ্বারা বেষ্টিত। দেশের সর্বোচ্চ শৃঙ্গ উচ্চতার স্নেজকা (Sněžka) এখানে অবস্থিত। পূর্বদিকের অংশ মোরাভিয়াও পাহাড়ি। এর মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে মোরাভা নদী। এছাড়া ওডার () নদীর উৎপত্তিও এখানে। চেক প্রজাতন্ত্রের পানি তিনটি ভিন্ন সাগরে প্রবাহিত হয়: উত্তর সাগর, বাল্টিক সাগর এবং কৃষ্ণ সাগর। চেক প্রজাতন্ত্র হামবুর্গ ডকের মাঝখানে আকারের ভূমি মোলদাউহাফেন ইজারা দেয়। এটি ভার্সাই চুক্তির অনুচ্ছেদ ৩৬৩ দ্বারা চেকোস্লোভাকিয়াকে পুরস্কৃত করা হয়েছিল, যাতে ভূমিবেষ্টিত দেশটি সমুদ্রগামী জাহাজে তাদের পণ্য স্থানান্তরিত করতে পারে। অঞ্চলটি ২০২৮ সালে জার্মানির কাছে ফেরত আসবে। উদ্ভিদ-ভৌগোলিকভাবে, চেক প্রজাতন্ত্র বোরিয়াল রাজ্যের অন্তর্গত সার্কামবোরিয়াল অঞ্চলের মধ্য ইউরোপীয় প্রদেশের অন্তর্ভুক্ত। ওয়ার্ল্ড ওয়াইড ফান্ড ফর নেচার এর তথ্যমতে, চেক প্রজাতন্ত্রের এলাকাটি চারটি বাস্তু অঞ্চলে বিভক্ত করা যায়: পশ্চিম ইউরোপীয় প্রশস্তপত্র বন, মধ্য ইউরোপীয় মিশ্র বন, প্যানোনীয় মিশ্র বন, কার্পাথীয় মন্টেন কনিফার বন। জলবায়ু thumb|০ °সেলসিয়াস সমতাপ ব্যবহার করে চেক প্রজাতন্ত্রের কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস ধরণ thumb|-৩ °সেলসিয়াস সমতাপ ব্যবহার করে চেক প্রজাতন্ত্রের কোপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস ধরণ চেক প্রজাতন্ত্রের জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ ধরনের। উষ্ণ গ্রীষ্মকাল এবং ঠাণ্ডা, মেঘলা ও তুষারময় শীতকালবিশিষ্ট এ দেশের জলবায়ু মহাদেশীয় ও মহাসাগরীয় জলবায়ুর মধ্যবর্তী পর্যায়ে অবস্থিত। দেশটির স্থলবেষ্টিত ভৌগোলিক অবস্থানের কারণে গ্রীষ্ম ও শীতকালের তাপমাত্রার মধ্যে উল্লেখযোগ্য পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়।R. Tolasz, Climate Atlas of the Czech Republic, Czech Hydrometeorological Institute, Prague, 2007. , graphs 1.5 and 1.6 জানুয়ারি বছরের শীতলতম মাস; এর পরেই রয়েছে ফেব্রুয়ারি ও ডিসেম্বর। এসময় পাহাড়ে এবং মাঝেমধ্যে শহর ও নিম্নভূমিতেও তুষারপাত হয়। মার্চ, এপ্রিল ও মে মাসের দিকে তাপমাত্রা সাধারণত বৃদ্ধি পায়, বিশেষ করে এপ্রিল মাসে দিনের তাপমাত্রা ও আবহাওয়ার ব্যাপক পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায়। বসন্তে বরফ গলে গিয়ে নদীর পানির উচ্চতা বাড়িয়ে তোলে। বছরের উষ্ণতম মাস হচ্ছে জুলাই; এর পরেই রয়েছে আগস্ট ও জুন। গ্রীষ্মকালের গড় তাপমাত্রা শীতকালের তুলনায় প্রায় বেশি। এছাড়া গ্রীষ্মকালে ঝড় ও বৃষ্টি দেখা যায়। উষ্ণ এবং শুষ্ক শরৎকাল সাধারণত সেপ্টেম্বরে শুরু হয়। অক্টোবরে, তাপমাত্রা বা এর নিচে নেমে যায় এবং পর্ণমোচী গাছের পাতা ঝরে পড়া শুরু হয়। নভেম্বরের শেষের দিকে তাপমাত্রা সাধারণত হিমাঙ্কের কাছাকাছি থাকে। এখানে সর্বকালের শীতলতম তাপমাত্রা পরিমাপ করা হয়েছিলো ১৯২৯ সালে চেসকে বুদেইয়োভিসের কাছে লিতভিনোভিসে অঞ্চলে এবং উষ্ণতম তাপমাত্রা ২০১২ সালে দোব্রিখোভিসে অঞ্চলে । বছরের বেশিরভাগ বৃষ্টিপাত গ্রীষ্মকালে হয়। বিক্ষিপ্ত বৃষ্টিপাত যদিও সারাবছর ধরে চলে (প্রাগে সেপ্টেম্বর ও অক্টোবর মাসে গড়ে প্রায় ১২ দিন কমপক্ষে বৃষ্টিপাত হয়, নভেম্বরে যা দাঁড়ায় প্রায় ১৬ দিনে)। কিন্তু ভারী বৃষ্টিপাত (দিনে এর বেশি) সাধারণত মে থেকে আগস্ট মাসে বেশি দেখা যায় (প্রতি মাসে গড়ে প্রায় দুই দিন)।R. Tolasz, Climate Atlas of the Czech Republic, Czech Hydrometeorological Institute, Prague, 2007. , graph 2.9. মাঝেমধ্যে তীব্র বজ্রপাত, বাতাস, শিলাবৃষ্টি ও টর্নেডো তৈরি হয়, বিশেষ করে গ্রীষ্মকালে। পরিবেশ ২০২০ সালের হিসাব অনুযায়ী পরিবেশগত অগ্রগতি সূচকে (EPI) চেক প্রজাতন্ত্র বিশ্বের ২০তম দেশ (কানাডা ও ইতালির সাথে যৌথভাবে)। ২০১৮ সালের ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ ইন্টেগ্রিটি সুচকে ১.৭১/১০ স্কোর নিয়ে বিশ্বের ১৭২টি দেশের মধ্যে এর অবস্থান ছিলো ১৬০তম। চেক প্রজাতন্ত্রে চারটি জাতীয় উদ্যান (বোহেমিয় সুইজারল্যান্ড জাতীয় উদ্যান, প্রদিয়ি জাতীয় উদ্যান, শুমাভা জাতীয় উদ্যান ও সংরক্ষিত ল্যান্ডস্কেপ, কারকোনোশ জাতীয় উদ্যান) এবং ২৫টি সংরক্ষিত ল্যান্ডস্কেপ এলাকা বিদ্যমান। ইতিহাস প্রাক-ইতিহাস প্রত্নতত্ত্ববিদরা এই অঞ্চলে প্রাগৈতিহাসিক মানব বসতির প্রমাণ পেয়েছেন, যা পুরা প্রস্তর যুগের। ধ্রুপদী যুগে, খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীর সেল্টিক অভিবাসনের ফলে বোহেমিয়া অঞ্চল বোইয়ের সাথে সংযুক্ত হয়। বোইরা আধুনিক প্রাগের কাছে একটি ক্ষুদ্র বসতির প্রতিষ্ঠা করেছিলো। পরবর্তীতে খ্রিস্টপূর্ব ১ম শতকে মার্কোমানি ও কাদির জার্মান উপজাতিরা সেখানে বসতি স্থাপন করে। কৃষ্ণ সাগর-কার্পেথীয় অঞ্চলের স্লাভরা এই অঞ্চলে বসতি স্থাপন করে। সাইবেরিয়া ও পূর্ব ইউরোপের হুন, আভার, বুলগার ও হাঙ্গেরীয় লোকজন কর্তৃক তাদের ভূমিতে আগ্রাসন তাদের অভিবাসনকে ত্বরান্বিত করে। ৬ষ্ট শতাব্দীতে হুনরা পশ্চিমদিকে বোহেমিয়া, মোরাভিয়া এবং বর্তমান অস্ট্রিয়া ও জার্মানির দিকে সরে যায়। ৭ম শতাব্দীতে ফ্রাঙ্ক বণিক সামো, আভারদের বিরুদ্ধে লড়াইরত স্লাভদের সমর্থন করে এবং সামো সাম্রাজ্যের শাসক হয়ে ওঠে। এটি মধ্য ইউরোপের প্রথম নথিভুক্ত স্লাভিক রাজ্য। ৮ম শতাব্দীতে মোইমির রাজবংশ নিয়ন্ত্রিত মোরাভিয়া রাজত্বের উত্থান ঘটে। ৯ম শতাব্দীতে মোরাভিয়ার প্রথম স্বাতপ্লুকের সময় এটি শীর্ষে ওঠে। তখন পর্যন্ত এটি ফ্রাঙ্গদের প্রভাবমুক্ত ছিলো। সিরিল ও মেথোডিয়াসের বাইজেন্টাইন অভিযানের মাধ্যমে মোরাভিয়ায় খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচারিত হয়। তারা পুরাতন স্লাভনিয় ভাষা (স্লাভদের সাহিত্যিক ও ধর্মীয়ভাবে ব্যবহৃত প্রথম ভাষা) ও গ্লাটোলিয় লিপি কোড করে। বোহেমিয়া thumb|left|রোমান সাম্রাজ্যের ভিতরে বোহেমিয়া রাজত্বের ভূমি (১৬০০)। ১০০২-১৮০৬ খ্রিস্টাব্দে চেক ভূমি সাম্রাজ্যের অংশ ছিলো এবং ১৩৪৬-১৪৩৭ ও ১৫৮৩-১৬১১ খ্রিস্টাব্দে প্রাগ রাজকীয় আসন ছিলো। নবম শতাব্দীর শেষভাগে পেমিস্লিভ রাজবংশের মাধ্যমে একীভূত হওয়ার মাধ্যমে বোহেমিয়ার ডাচি আবির্ভূত হয়। বোহেমিয়া ১০০২ থেকে ১৮০৬ সাল পর্যন্ত রোমান সাম্রাজ্যের একটি ইম্পেরিয়াল রাজ্য ছিল। ১২১২ সালে প্রথম রোমিসল অটোকার সম্রাটের কাছ থেকে সিসিলির গোল্ডেন বুল মুক্ত করেন এবং বোহেমিয়ার ডাচিকে একটি রাজ্যে উন্নীত করা হয়। ত্রয়োদশ শতাব্দীতে জার্মান অভিবাসীরা বোহেমিয়ার সীমানায় বসতি স্থাপন করে। ইউরোপ আক্রমণের সময় মঙ্গোলরা মোরাভিয়াতেও আক্রমণ চালিয়েছিলো, কিন্তু অলোমুস নামক স্থানে এসে তারা পরাজিত হয়। একের পর এক সাম্রাজ্যের লড়াই শেষে লুক্সেমবার্গ হাউজ বোহেমিয়ার সিংহাসন লাভ করে। বোহেমিয়ায় গির্জা সংস্কারের প্রচেষ্টা চতুর্দশ শতাব্দীর শেষের দিকে শুরু হয়। ইয়ান হুসের অনুসারীরা রোমান চার্চ থেকে আলাদা হয়ে যায় এবং হুসাইট যুদ্ধে (১৪১৯-১৪৩৪) সিগিসমান্ড কর্তৃক সংগঠিত পাঁচটি ক্রুসেডকে দমন করে। পরবর্তী দুই শতাব্দীব্যাপী, বোহেমিয়া এবং মোরাভিয়ার জনসংখ্যার ৯০ শতাংশকে হুসাইট হিসাবে বিবেচনা করা হয়। শান্তিবাদী চিন্তাবিদ পেট্রা সেলশিস্কি, মোরাভিয়ান ভাইদের আন্দোলনকে অনুপ্রাণিত করেছিলেন (১৫ শতকের মাঝামাঝি সময়ে) যা রোমান ক্যাথলিক চার্চ থেকে পুরোপুরি আলাদা হয়ে গিয়েছিলো। thumb|upright|alt=হুসাইট যুদ্ধের সময় হুসাইট এবং ক্রুসেডারদের মধ্যে যুদ্ধ; জেনা কোডেক্স, পঞ্চদশ শতাব্দী|হুসাইট যুদ্ধের সময় হুসাইট এবং ক্রুসেডারদের মধ্যে যুদ্ধ; জেনা কোডেক্স, পঞ্চদশ শতাব্দী ১৪২১ সালের ২১ শে ডিসেম্বর তারিখে সামরিক কমান্ডার এবং বেতনভুক্ত সৈনিক ইয়ান জিজ্কা, কুতনা হোরার যুদ্ধে তার বাহিনীকে নেতৃত্ব দেন, যার ফলে হুসাইটদের বিজয় ঘটে। তিনি আজ জাতীয় বীর হিসেবে সম্মানিত। ১৫২৬ সালের পরে বোহেমিয়া হাবসবার্গের নিয়ন্ত্রণে চলে আসে। হাবসবার্গরা প্রথমে নির্বাচিত এবং পরে ১৬২৭ সালে বোহেমিয়ার বংশগত শাসক হয়ে ওঠে। ১৫৮৩ থেকে ১৬১১ সালের মধ্যে প্রাগ ছিল রোমান সম্রাট দ্বিতীয় রুডলফ এবং তার দরবারের সরকারি আসন। প্রাগের প্রতিরক্ষা এবং পরবর্তীতে ১৬১৮ সালের হাবসবার্গের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ, 'ত্রিশ বছরের যুদ্ধ' এর সূচনা করে। ১৬২০ সালে হোয়াইট মাউন্টেনের যুদ্ধে বোহেমিয়ার বিদ্রোহ দমন হয়। ফলে বোহেমিয়া এবং অস্ট্রিয়ায় অবস্থিত হাবসবার্গের বংশগত ভূমির মধ্যকার সম্পর্ক জোরদার হয়। ১৬২১ সালে বোহেমিয়া বিদ্রোহের নেতাদের মৃত্যুদন্ড কার্যকর করা হয়। আভিজাত্য এবং মধ্যবিত্ত প্রোটেস্ট্যান্টদের হয় ক্যাথলিক ধর্মে ধর্মান্তরিত হতে হয়েছিলো অথবা দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছিলো। thumb|upright|left|১৬১৮ সালের প্রাগের প্রতিরক্ষার মাধ্যমে হাবসবার্গের বিরুদ্ধে বোহেমিয়ান বিদ্রোহের সূত্রপাত ঘটে এবং এটি ত্রিশ বছরের যুদ্ধের সূচনা নির্দেশ করে। ১৬২০ থেকে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষভাগের "অন্ধকার যুগে" প্রটেস্ট্যান্টদের বহিষ্কারের পাশাপাশি যুদ্ধ, রোগ ও দুর্ভিক্ষের কারণে চেক ভূখণ্ডের জনসংখ্যা এক তৃতীয়াংশ হ্রাস পায়।Oskar Krejčí, Martin C. Styan, Ústav politických vied SAV. (২০০৫). Geopolitics of the Central European region: the view from Prague and Bratislava. পৃষ্ঠা ২৯৩। হাবসবার্গরা ক্যাথলিক ব্যতীত অন্যান্য সমস্ত খ্রিস্টান মতবাদ নিষিদ্ধ করেছিলো। বারোক সংস্কৃতির সমৃদ্ধি এই ঐতিহাসিক সময়ের অস্পষ্টতা প্রদর্শন করে। উসমানীয় তুর্কি ও তাতাররা ১৬৬৩ সালে মোরাভিয়া আক্রমণ করে। ১৬৭৯-১৬৮০ খ্রিষ্টাব্দে চেক ভূখন্ড ভিয়েনার গ্রেট প্লেগ এবং সার্ফদের অভ্যুত্থানের মুখোমুখি হয়। দুর্ভিক্ষের কারণে কৃষক বিদ্রোহ দানা বেধে ওঠে।The Cambridge economic history of Europe: The economic organization of early modern Europe. E. E. Rich, C. H. Wilson, M. M. Postan (১৯৭৭)। পৃষ্ঠা ৬১৪। ১৭৮১ থেকে ১৮৪৮ সালের মধ্যে ভূমিদাসত্ব বিলুপ্ত করা হয়। নেপলীয় যুদ্ধের বেশ কয়েকটি লড়াই বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্র অঞ্চলে সংঘটিত হয়েছিল। ১৮০৬ সালে রোমান সাম্রাজ্যের সমাপ্তির ফলে বোহেমিয়ার রাজনৈতিক অবস্থার অবনতি ঘটে। ফলে বোহেমিয়া রোমান সাম্রাজ্যের নির্বাচকমণ্ডলীতে তার অবস্থান এবং ইম্পেরিয়াল ডায়েটে তার নিজস্ব রাজনৈতিক প্রতিনিধিত্ব হারিয়ে ফেলে। বোহেমিয়ান ভূখন্ড অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের অংশ হয়ে ওঠে। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে চেকের জাতীয় পুনরুজ্জীবনের উত্থান শুরু হয়। যার উদ্দেশ্য ছিল চেক ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতীয় পরিচয়কে পুনরুজ্জীবিত করা। অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্যের মধ্যে বোহেমিয়ান শাসনের উদার সংস্কার এবং স্বায়ত্তশাসনের জন্য প্রাগের ১৮৪৮ সালের বিপ্লব ও সংগ্রাম দমন করা হয়। প্রথমদিকে বোহেমিয়াকে কিছু ছাড় দেওয়া হবে মনে হলেও, শেষ পর্যন্ত সম্রাট প্রথম ফ্রাঞ্জ জোসেফ শুধুমাত্র হাঙ্গেরির সাথে একটি সমঝোতায় আসেন। ১৮৬৭ সালের অস্ট্রো-হাঙ্গেরীয় সমঝোতা এবং বোহেমিয়ার রাজা হিসাবে ফ্রাঞ্জ জোসেফের অনুপলব্ধ রাজ্যাভিষেক কিছু চেক রাজনীতিবিদের হতাশার কারণ হয়ে দাঁড়ায়। বোহেমিয়া শাসনের ভূমিগুলি তথাকথিত সিসলেথানিয়ার অংশ হয়ে ওঠে। চেক সামাজিক গণতান্ত্রিক এবং প্রগতিশীল রাজনীতিবিদরা সার্বজনীন ভোটাধিকারের জন্য লড়াই শুরু করেন। ১৯০৭ সালে সার্বজনীন পুরুষ ভোটাধিকারের অধীনে প্রথম নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। চেকোস্লোভাকিয়া thumb|upright=1.35|প্রথম চেকোস্লোভাক প্রজাতন্ত্র প্রাক্তন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরির জনসংখ্যার ২৭% এবং শিল্পের প্রায় ৮০% নিয়ে গঠিত।Stephen J. Lee. Aspects of European History 1789–1980. Page 107. Chapter "Austria-Hungary and the successor states". Routledge. 28 January 2008. ১৯১৮ সালে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের শেষে হাবসবার্গ রাজতন্ত্রের পতনের সময়, টমাশ গেরিক মাসারিকের নেতৃত্বে চেকোস্লোভাকিয়ার স্বাধীন প্রজাতন্ত্র তৈরি করা হয়, যা বিজয়ী মিত্রশক্তিতে যোগ দিয়েছিলো।Preclík, Vratislav. Masaryk a legie (Masaryk and legions), váz. kniha, 219 pages, first issue - vydalo nakladatelství Paris Karviná, Žižkova 2379 (734 01 Karviná, Czech Republic) ve spolupráci s Masarykovým demokratickým hnutím (Masaryk Democratic Movement, Prague), ২০১৯, , পৃষ্ঠা ২২-৮১, ৮৫-৮৬, ১১১-১১২, ১২৪-১২৫, ১২৮, ১২৯, ১৩২, ১৪০-১৪৮, ১৮৪-২০৯ বোহেমিয়ান রাজত্বও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। প্রথম চেকোস্লোভাক প্রজাতন্ত্রে প্রাক্তন অস্ট্রো-হাঙ্গেরির জনসংখ্যার মাত্র ২৭% অন্তর্ভুক্ত হলেও শিল্পকারখানার প্রায় ৮০% অন্তর্ভুক্ত ছিলো। ফলে এর পশ্চিমা শিল্প রাজ্যগুলির সাথে প্রতিযোগিতা করার সামর্থ ছিলো। ১৯১৩ সালের তুলনায় ১৯২৯ সালে মোট দেশজ উৎপাদন ৫২% এবং শিল্প উৎপাদন ৪১% বৃদ্ধি পায়। ১৯৩৮ সালে চেকোস্লোভাকিয়া বিশ্ব শিল্প উৎপাদনে ১০ম স্থান অধিকার করে। চেকোস্লোভাকিয়া মধ্য ও পূর্ব ইউরোপের একমাত্র দেশ যা সমগ্র আন্তঃযুদ্ধের সময়কালে গণতন্ত্র বজায় রেখেছে। যদিও প্রথম চেকোস্লোভাক প্রজাতন্ত্র একটি এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র ছিল, তবে এটি তার সংখ্যালঘুদের কিছু অধিকার প্রদান করেছিলো। সংখ্যালঘুদের মধ্যে বৃহত্তম জার্মান (১৯২১ সালে ২৩.৬%), হাঙ্গেরীয় (৫.৬%) এবং ইউক্রেনীয়রা (৩.৫%)। thumb|left|১৯৬৮ সালে চেকোস্লোভাকিয়ার উপর ওয়ার'শ আক্রমণের সময় প্রাগ পশ্চিম চেকোস্লোভাকিয়া নাৎসি জার্মানিরা দখল করে। ফলে বেশিরভাগ অঞ্চল বোহেমিয়া ও মোরাভিয়ার প্রটেকটরেট এর অন্তর্ভুক্ত হয়। প্রাগের উত্তরে চেক অঞ্চলের মধ্যে, টেরেজিন নামক স্থানে একটি নাৎসি বন্দিশিবির অবস্থিত ছিলো। প্রোটেক্টরেটের অন্তর্ভুক্ত ইহুদিদের বেশিরভাগ অংশকে নাৎসি-পরিচালিত বন্দিশিবিরে হত্যা করা হয়েছিলো। নাৎসি জেনারেলপ্লান ওস্ট জার্মান জনগণের জন্য আরও বেশি বসবাস স্থান প্রদানের লক্ষ্যে বেশিরভাগ বা সমস্ত চেকদের নির্মূল, বহিষ্কার, জার্মানীকরণ বা দাসত্বের আহ্বান জানায়।Chad Bryant (২০০৯) Prague in Black: Nazi Rule and Czech Nationalism (Harvard University Press, 2009), পৃষ্ঠা ১০৪-১৭৮. Snyder, Timothy (২০১০). Bloodlands: Europe Between Hitler and Stalin. Basic Books. পৃষ্ঠা ১৬০. নাৎসি দখলদারিত্বের বিরুদ্ধে চেকোস্লোভাক প্রতিরোধ গড়ে উঠেছিলো। এর পাশাপাশি চেকোস্লোভাকদের নাৎসি-বিরোধী প্রতিরোধের জন্য তাদের বিরুদ্ধেও নাৎসিরা প্রতিশোধ নেয়। ১৯৪৫ সালের ৯ মে সোভিয়েত ও আমেরিকান সেনাবাহিনীর আগমন এবং প্রাগ বিদ্রোহের মাধ্যমে জার্মান দখলদারিত্বের অবসান ঘটে।"A Companion to Russian History ". Abbott Gleason (২০০৯). Wiley-Blackwell. পৃষ্ঠা ৪০৯. চেকোস্লোভাকিয়ার বেশিরভাগ জার্মান-ভাষীকে দেশ থেকে জোরপূর্বক বহিষ্কার করা হয়। প্রথমদিকে স্থানীয় সহিংসতার কারণে এবং পরবর্তীতে পোটসডাম সম্মেলনে সোভিয়েত ইউনিয়ন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং গ্রেট ব্রিটেন কর্তৃক গঠিত "সংগঠিত স্থানান্তর" এর পৃষ্ঠপোষকতায় এটি করা হয়।Chad Bryant (2009) Prague in Black: Nazi Rule and Czech Nationalism (Harvard University Press, 2009), 208-252. ১৯৪৬ সালের নির্বাচনে, কমিউনিস্ট পার্টি ৩৮% ভোট লাভ করে এবং চেকোস্লোভাক পার্লামেন্টের বৃহত্তম দল হয়ে ওঠে।F. Čapka: Dějiny zemí Koruny české v datech . XII. Od lidově demokratického po socialistické Československo – pokračování. Libri.cz এটি অন্যান্য দলগুলির সাথে একটি জোট গঠন করে এবং ক্ষমতা সংহত করে। ১৯৪৮ সালে একটি অভ্যুত্থান ঘটে এবং একটি এক-দলীয় সরকার গঠিত হয়। পরবর্তী ৪১ বছর ধরে, চেকোস্লোভাক কমিউনিস্ট রাষ্ট্রটিতে পূর্ব ব্লকের অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক বৈশিষ্ট্য বজায় থাকে। ১৯৬৮ সালের চেকোস্লোভাকিয়ায় ওয়ার'শ আক্রমণের মাধ্যমে প্রাগ বসন্ত রাজনৈতিক উদারীকরণ বন্ধ হয়ে যায়। বিশ্লেষকরা বিশ্বাস করেন যে এই আগ্রাসনের ফলে কমিউনিস্ট আন্দোলন ভেঙে যায়, যা শেষ পর্যন্ত ১৯৮৯ সালের বিপ্লবের দিকে পরিচালিত হয়। চেক প্রজাতন্ত্র thumb|upright|ভাস্লাভ হাভেল, বিংশ শতাব্দীর ইতিহাসের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্ব। মখমল বিপ্লবের নেতা, চেকোস্লোভাকিয়ার শেষ রাষ্ট্রপতি এবং চেক প্রজাতন্ত্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি। ১৯৮৯ সালের নভেম্বরে মখমল বিপ্লবের মাধ্যমে চেকোস্লোভাকিয়া একটি উদার গণতন্ত্রে ফিরে আসে। ১৯৯৩ সালের ১ জানুয়ারি, দেশটি শান্তিপূর্ণভাবে চেক প্রজাতন্ত্র এবং স্লোভাকিয়া নামক দুটি দেশে বিভক্ত হয়ে যায়। উভয় দেশই একটি বাজার অর্থনীতি তৈরির উদ্দেশ্যে অর্থনৈতিক সংস্কার এবং বেসরকারীকরণের মধ্য দিয়ে অগ্রসর হয়। প্রক্রিয়াটি সফল হয়েছিল; ২০০৬ সালে বিশ্বব্যাংক চেক প্রজাতন্ত্রকে "উন্নত দেশ" হিসাবে স্বীকৃতি দেয় এবং ২০০৯ সালে মানব উন্নয়ন সূচকে দেশটি "সমুন্নত মানব উন্নয়ন" এর জাতি হিসেবে স্থান লাভ করে। চেক প্রজাতন্ত্র ১৯৯১ সাল থেকে চেকোস্লোভাকিয়ার অংশ হিসেবে এবং ১৯৯৩ সাল থেকে তার নিজস্ব অধিকারে, ভিসেগ্রাদ গ্রুপ এর সদস্য ছিলো। ১৯৯৫ সাল থেকে এটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ও.ই.সি.ডি) এর সদস্য। দেশটি ১৯ সালের ১২ মার্চ ন্যাটোতে এবং ২০০৪ সালের ১ মে ইউরোপীয় ইউনিয়নে যোগদান করে। ২০০৭ সালের ২১ শে ডিসেম্বর চেক প্রজাতন্ত্র শেঙেন এরিয়াতে যোগদান করে। ২০১৭ সাল নাগাদ, চেক সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টি ও সিভিক ডেমোক্রেটিক পার্টি পর্যায়ক্রমে চেক প্রজাতন্ত্রের সরকারগুলোর নেতৃত্ব দেয়। ২০১৭ এর অক্টোবরে দেশের দ্বিতীয় ধনী ব্যক্তি আন্দ্রেয়ি বাবিশের নেতৃত্বে এএনও ২০১১ দল তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী, সিভিক ডেমোক্রেটিক পার্টির চেয়ে তিনগুণ বেশি ভোট পেয়ে নির্বাচনে জয়লাভ করে। ২০১৭ সালের ডিসেম্বরে চেক প্রেসিডেন্ট মিলোশ জেমান আন্দ্রেয়ি বাবিশকে নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নিয়োগ দেন। ২০২১ সালের অক্টোবরে নির্বাচনে পেট্রা ফিয়ালা নতুন প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। তিনি স্পোলু জোট এবং পাইরেটস অ্যান্ড মেয়রস জোটের মেলবন্ধনে একটি সরকারি জোট গঠন করেন। জোটটি বাবিসের নেতৃত্বাধীন এএনও দলকে সংকীর্ণভাবে পরাজিত করে। সরকার চেক প্রজাতন্ত্র একটি বহুত্ববাদী বহুদলীয় সংসদীয় প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র। দেশটির সংসদ (Parlament České republiky) দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট; চেম্বার অব ডেপুটিজ (, ২০০ জন সদস্য) এবং সিনেট (, ৮১ জন সদস্য)। চেম্বার অফ ডেপুটিজ এর সদস্যরা আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের মাধ্যমে (৫% নির্বাচনী সীমা) চার বছর মেয়াদে নির্বাচিত হন। এখানে ১৪টি নির্বাচনী জেলা রয়েছে, যা দেশের প্রশাসনিক অঞ্চলের অনুরূপ। চেক ন্যাশনাল কাউন্সিল এর উত্তরসূরী হচ্ছে চেম্বার অব ডেপুটিজ। প্রাক্তন চেকোস্লোভাকিয়ার বর্তমানে বিলুপ্ত ফেডারেল পার্লামেন্টের সব ক্ষমতা এবং দায়িত্ব এর রয়েছে। সিনেটের সদস্যরা একক-আসনের নির্বাচনী এলাকায় ছয় বছরের মেয়াদ দুই-ধাপের রানঅফ ভোটের মাধ্যমে নির্বাচিত হন। যার মধ্যে এক-তৃতীয়াংশ নির্বাচিত হন প্রতি জোড় বছরের শরৎকালে। ব্যবস্থাটি মার্কিন সিনেটের আদলে তৈরি করা হয়েছে, তবে প্রতিটি নির্বাচনী এলাকা প্রায় সমান আকারের এবং ব্যবহৃত ভোটিং সিস্টেমটি একটি দুই-ধাপের রানঅফ। thumb|চেক প্রজাতন্ত্রের পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ, চেম্বার অব ডেপুটিজ রাষ্ট্রপতি সীমিত এবং নির্দিষ্ট ক্ষমতাবিশিষ্ট একজন আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রপ্রধান, যিনি প্রধানমন্ত্রীকে নিয়োগ দেন এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাব অনুসারে মন্ত্রিসভার অন্যান্য সদস্যদের নিযুক্ত করেন। ১৯৯৩ সাল থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত বিদ্যমান নিয়মে, চেক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি পাঁচ বছরের মেয়াদে সংসদের একটি যৌথ অধিবেশন দ্বারা নির্বাচিত হন এবং পরপর দুইবারের (ভাস্লাভ হাভেল দুইবার, ভাস্লাভ ক্লাউস দুইবার) চেয়ে বেশি নির্বাচিত হতে পারেন না। ২০১৩ সাল থেকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন সরাসরি সংঘটিত হয়। কেউ কেউ যুক্তি দেখিয়েছেন, রাষ্ট্রপতির সরাসরি নির্বাচন প্রবর্তনের সাথে সাথে চেক প্রজাতন্ত্র সংসদীয় ব্যবস্থা থেকে দূরে সরে গিয়ে একটি আধা-রাষ্ট্রপতি ব্যবস্থার দিকে চলে গেছে। সরকারের নির্বাহী ক্ষমতা সংবিধান থেকে উদ্ভূত। সরকারের সদস্য হলেন প্রধানমন্ত্রী, উপ-প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য মন্ত্রীগণ। সরকার চেম্বার অফ ডেপুটিজ এর কাছে দায়বদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী সরকার প্রধান। বেশিরভাগ বিদেশী ও অভ্যন্তরীণ নীতিনির্ধারণ এবং সরকারী মন্ত্রী নির্বাচন করার ক্ষমতা তার রয়েছে। |রাষ্ট্রপতি |মিলোশ জেমান |পার্টি অব সিভিক রাইটস (এসপিজেড) |৮ মার্চ ২০১৩ |- |সিনেটের প্রধান |মিলোশ ভিস্ট্রিসিল |সিভিক ডেমোক্রেটিক পার্টি (ওডিএস) |১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২০ |- |চেম্বার অব ডেপুটিজ এর প্রধান |মার্কেটা পেকারোভা আডামোভা |টপ জিরোনাইন |১০ নভেম্বর ২০২১ |- |প্রধানমন্ত্রী |পেট্রা ফিয়ালা |সিভিক ডেমোক্রেটিক পার্টি (ওডিএস) |২৮ নভেম্বর ২০২১ |} আইন right|thumb|বার্নোতে অবস্থিত চেক প্রজাতন্ত্রের সাংবিধানিক আদালতের অভ্যন্তর চেক প্রজাতন্ত্র একটি এককেন্দ্রিক রাষ্ট্র। এর দেওয়ানি আইন ব্যবস্থা, মহাদেশীয় ধরনের উপর ভিত্তি করে রচিত যা জার্মান আইনি সংস্কৃতি থেকে উদ্ভুত। আইনি ব্যবস্থার ভিত্তি হল ১৯৯৩ সালে গৃহীত চেক প্রজাতন্ত্রের সংবিধান। ২০১০ সাল থেকে দণ্ডবিধি এবং ২০১৪ সাল থেকে একটি নতুন দেওয়ানি বিধি কার্যকর হয়। আদালত ব্যবস্থায় জেলা, প্রশাসনিক বিভাগ (county) এবং সর্বোচ্চ আদালত (supreme court) অন্তর্ভুক্ত রয়েছে এবং এটি দেওয়ানি, ফৌজদারি এবং প্রশাসনিক শাখায় বিভক্ত। চেক বিচার বিভাগের রয়েছে তিনটি সর্বোচ্চ আদালত। সাংবিধানিক আদালত ১৫ জন সাংবিধানিক বিচারক নিয়ে গঠিত এবং আইনসভা বা সরকার কর্তৃক যেকোনো সংবিধান লঙ্ঘন তত্ত্বাবধান করে। সর্বোচ্চ আদালত ৬৭ জন বিচারক নিয়ে গঠিত এবং এটি চেক প্রজাতন্ত্রের বেশিরভাগ আইনী মামলার জন্য সর্বোচ্চ আপিলের আদালত। সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত প্রক্রিয়াগত এবং প্রশাসনিক আনুগত্যের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়। এর কিছু নির্দিষ্ট রাজনৈতিক বিষয়ের উপর এখতিয়ার রয়েছে। যেমন, রাজনৈতিক দল গঠন ও বন্ধ করা, সরকারী সংস্থাগুলির মধ্যে এখতিয়ারগত সীমানা এবং সরকারী অফিসের সদস্যপদে দাঁড়ানোর জন্য ব্যক্তির যোগ্যতা নির্ধারণ। সর্বোচ্চ আদালত, সর্বোচ্চ প্রশাসনিক আদালত এবং সর্বোচ্চ সরকারি অভিশংসকের (supreme public prosecutor) কার্যালয় বার্নোতে অবস্থিত। বৈদেশিক সম্পর্ক thumb|চেক নাগরিকদের জন্য ভিসা-মুক্ত প্রবেশের অনুমতিযুক্ত দেশগুলি সবুজ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন নীল চেক প্রজাতন্ত্র গত কয়েক দশক ধরে সবচেয়ে নিরাপদ বা সবচেয়ে শান্তিপূর্ণ দেশগুলির মধ্যে অন্যতম হিসেবে স্থান পেয়েছে। এটি জাতিসংঘ, ইউরোপীয় ইউনিয়ন, ন্যাটো, ওইসিডি ও কাউন্সিল অব ইউরোপের সদস্য এবং অর্গানাইজেশন অব আমেরিকান স্টেটস এর পর্যবেক্ষক।cite web |url=https://2009-2017.state.gov/r/pa/ei/bgn/3237.htm |title=The Czech Republic's Membership in International Organizations |publisher=United States State Department |access-date=8 August 2015}} চেক প্রজাতন্ত্রের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক যুক্ত বেশিরভাগ দেশের দূতাবাসগুলি প্রাগে অবস্থিত এবং কনস্যুলেটগুলি সারা দেশব্যাপী অবস্থিত। চেক পাসপোর্ট ভিসায় সীমাবদ্ধ। ২০১৮ সালের হেনলি অ্যান্ড পার্টনার্স ভিসা সীমাবদ্ধতা সূচক অনুযায়ী, চেক নাগরিকদের ১৭৩ টি দেশে ভিসা-মুক্ত প্রবেশাধিকার রয়েছে। এ সূচকে দেশটি মাল্টা এবং নিউজিল্যান্ডের সাথে যৌথভাবে ৭ম স্থানে রয়েছে। বিশ্ব পর্যটন সংস্থা চেক পাসপোর্টকে ২৪তম স্থান দিয়েছে। মার্কিন ভিসা ওয়েভার প্রোগ্রাম চেক নাগরিকদের জন্য প্রযোজ্য। পররাষ্ট্রনীতি নির্ধারণে প্রধানমন্ত্রী ও পররাষ্ট্রমন্ত্রীর প্রাথমিক ভূমিকা রয়েছে, যদিও এক্ষেত্রে রাষ্ট্রপতির বিশেষ প্রভাব রয়েছে এবং বিদেশে তিনিই দেশের প্রতিনিধিত্ব করেন। ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং ন্যাটোর সদস্যপদ চেক প্রজাতন্ত্রের পররাষ্ট্রনীতির কেন্দ্রীয় বিষয়। বৈদেশিক সম্পর্ক ও তথ্য অফিস (ইউজেডএসআই) গুপ্তচরবৃত্তি এবং বিদেশী নীতি ব্রিফিংয়ের জন্য বিশেষ গোয়েন্দা সংস্থা হিসেবে কাজ করে। এছাড়া এটি বিদেশে চেক প্রজাতন্ত্রের দূতাবাসের সুরক্ষা হিসেবে কাজ করে। ভিসেগ্রাড গ্রুপের সদস্য হিসাবে চেক প্রজাতন্ত্রের স্লোভাকিয়া, পোল্যান্ড এবং হাঙ্গেরির সাথে সম্পর্ক রয়েছে। এছাড়া জার্মানি, ইসরায়েল, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপীয় ইউনিয়ন ও এর সদস্যদের সাথে সম্পর্ক বিদ্যমান। চেক কর্মকর্তারা বেলারুশ, মলদোভা, মিয়ানমার ও কিউবায় ভিন্নমতাবলম্বীদের সমর্থন জানিয়েছেন। অতীতের বিখ্যাত চেক কূটনীতিকদের মধ্যে ছিলেন শিনিজ ও টেত্তাউ এর কাউন্ট ফিলিপ কিনস্কি, শোয়ার্জেনবার্গের রাজকুমার কার্ল ফিলিপ, এডভার্দ বেনেস, ইয়ান মাসারিক, জিরি ডিয়েনস্টবিয়ার এবং রাজকুমার কারেল শোয়ার্জেনবার্গ। সামরিক খাত thumb|right|প্রাগে চেক প্রজাতন্ত্রের সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ চেক সশস্ত্র বাহিনী ভূমি বাহিনী, বিমান বাহিনী এবং বিশেষায়িত সহযোগী ইউনিট নিয়ে গঠিত। সশস্ত্র বাহিনী প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় কর্তৃক পরিচালিত হয়। চেক প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি সশস্ত্র বাহিনীর কমান্ডার-ইন-চিফ। ২০০৪ সালে সেনাবাহিনী নিজেদের একটি সম্পূর্ণ পেশাদার সংস্থায় রূপান্তরিত করে এবং বাধ্যতামূলক সামরিক পরিষেবা বিলুপ্ত করা হয়। দেশটি ১৯৯৯ সালের ১২ মার্চ থেকে ন্যাটোর সদস্য। প্রতিরক্ষা খাতে ব্যয় জিডিপির প্রায় ১.২৮ শতাংশ (২০২১)। সশস্ত্র বাহিনী চেক প্রজাতন্ত্র এবং তার মিত্রদের রক্ষা করা, বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তা স্বার্থ প্রচার করা এবং ন্যাটোতে অবদান রাখার দায়িত্ব পালন করে। বর্তমানে, ন্যাটোর সদস্য হিসাবে চেক সামরিক বাহিনী রিসোলিউট সাপোর্ট এবং কেএফওআর অপারেশনে অংশ নিচ্ছে। আফগানিস্তান, মালি, বসনিয়া ও হার্জেগোভিনা, কসোভো, মিশর, ইসরায়েল এবং সোমালিয়ায় এর সেনা নিয়োজিত রয়েছে। চেক বিমান বাহিনী বাল্টিক রাষ্ট্র এবং আইসল্যান্ডেও কাজ করেছিল। চেক সামরিক বাহিনীর প্রধান সরঞ্জামগুলির মধ্যে রয়েছে জেএএস ৩৯ গ্রিপেন মাল্টি-রোল ফাইটারস, এরো এল-১৫৯ অ্যালকা যুদ্ধ বিমান, এমআই-৩৫ অ্যাটাক হেলিকপ্টার, সাঁজোয়া যানবাহন (পান্ডুর দ্বিতীয়, ওটি-৬৪, ওটি-৯০, বিভিপি-২) এবং ট্যাংক (টি-৭২ এবং টি-৭২এম৪সিজেড)। অতীতের বিখ্যাত চেক এবং চেকোস্লোভাক সেনা এবং সামরিক নেতারা হলেন ইয়ান জিজকা, আলব্রেখট ভন ওয়ালেনস্টাইন, কার্ল ফিলিপ, শোয়ার্জেনবার্গের রাজকুমার, জোসেফ রাডেস্কি ভন রাডেজ, জোসেফ রাডেটস্কি ভন রাডেটজ, জোসেফ শ্নেইদারেক, হেলিওডর পিকা, লুডভক স্ভোবোদা, জ্যান কুবিশ, যোসেফ গাবচিক ফ্রানটিশেক ফাইটল এবং পেট্রা পাভেল। প্রশাসনিক বিভাগ ২০০০ সাল থেকে চেক প্রজাতন্ত্র তেরোটি অঞ্চলে (Czech: kraje, singular kraj) বিভক্ত। এছাড়া রয়েছে রাজধানী প্রাগ। প্রতিটি অঞ্চলের নিজস্ব নির্বাচিত আঞ্চলিক পরিষদ এবং একটি আঞ্চলিক গভর্নর রয়েছে। প্রাগে পরিষদ ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতা কার্যকর করা হয় সিটি কাউন্সিল এবং মেয়রের মাধ্যমে। ১৯৯৯ সালে একটি প্রশাসনিক সংস্কারের মাধ্যমে তিনটি "সংবিধিবদ্ধ শহর" সহ (প্রাগ ব্যতীত, যার বিশেষ মর্যাদা ছিল) পুরানো ৭৬ টি জেলা (ওক্রেসি, একবচনে ওকরা) তাদের বেশিরভাগ গুরুত্ব হারিয়েছে। তারা আঞ্চলিক বিভাগ এবং রাজ্য প্রশাসনের বিভিন্ন শাখার আসন হিসাবে রয়ে গেছে। ক্ষুদ্রতম প্রশাসনিক একক হল ওবেক (পৌরসভা)। ২০২১ সালের হিসাবে, চেক প্রজাতন্ত্র ৬,২৫৪ টি পৌরসভায় বিভক্ত। শহর ও নগরীগুলোও পৌরসভা। প্রাগের রাজধানী শহর একইসাথে একটি অঞ্চল এবং পৌরসভা। অর্থনীতি thumb|right|চেক প্রজাতন্ত্রের মাথাপিছু প্রকৃত জিপিডি উন্নয়ন, ১৯৭৩ থেকে ২০১৮ thumb|চেক প্রজাতন্ত্র ইউরোপীয় একক বাজার এবং শেনজেন এলাকার অংশ। কিন্তু দেশটি তার নিজস্ব মুদ্রা চেক কোরুনা ব্যবহার করে। চেক প্রজাতন্ত্রের পরিষেবা, উৎপাদন ও উদ্ভাবন ভিত্তিক একটি উন্নত, উচ্চ-আয়ের রপ্তানি-ভিত্তিক সামাজিক বাজার অর্থনীতি রয়েছে। এটি একটি কল্যাণ রাষ্ট্র এবং এটি ইউরোপীয় সামাজিক মডেল বজায় রাখে। চেক প্রজাতন্ত্র ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য হিসেবে ইউরোপীয় একক বাজারে অংশগ্রহণ করে এবং এটি ইউরোপীয় ইউনিয়নের অর্থনীতির একটি অংশ। কিন্তু মুদ্রা হিসেবে এটি ইউরোর পরিবর্তে নিজস্ব মুদ্রা চেক কোরুনা ব্যবহার করে। দেশটির মাথাপিছু জিডিপি ইউরোপীয় ইউনিয়নের গড় জিডিপির শতকরা ৯১ ভাগ এবং দেশটি ওইসিডির সদস্য। চেক ন্যাশনাল ব্যাংক কর্তৃক দেশটির মুদ্রানীতি পরিচালিত হয়, যার স্বাধীনতা সংবিধান দ্বারা নিশ্চিতকৃত। চেক প্রজাতন্ত্র জাতিসংঘের অসমতা-সামঞ্জস্যকৃত মানব উন্নয়ন সূচকে ১২শ এবং বিশ্বব্যাংকের মানব মূলধন সূচকে ২৪শ স্থানে রয়েছে। দ্য গার্ডিয়ান পত্রিকা এটিকে "ইউরোপের সবচেয়ে সমৃদ্ধ অর্থনীতিগুলোর মধ্যে অন্যতম" হিসেবে বর্ণনা করেছে।Czech democracy ‘under threat’ from rising debt crisis. The Guardian. 6 January 2019. কোভিড-১৯ মহামারী চেক অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিলো। তবে অর্থনীতিবিদরা ২০২১ সালে ৩.৯ শতাংশ এবং ২০২২ সালে ৪.৩ শতাংশ অর্থনৈতিক বৃদ্ধির পূর্বাভাস দিয়েছেন। , ক্রয় ক্ষমতার সমতায় দেশের মাথাপিছু জিডিপি ৪০,৭৯৩ ডলার এবং ন্যুনতম মূল্যে ২২,৯৪২ ডলার। আলিয়াঞ্জ এ.জি. এর মতে, ২০১৮ সালে দেশটি একটি এমডব্লিউসি (গড় সম্পদ দেশ) ছিল, যা নিট আর্থিক সম্পদের ক্ষেত্রে ২৬ তম স্থান অর্জন করেছিলো। ২০১৭ সালে দেশটি ৪.৫ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে। ২০১৬ সালের বেকারত্বের হার ছিলো ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে সর্বনিম্ন (২.৪ শতাংশ) এবং ২০১৬ সালের দারিদ্র্যের হার ছিল ওইসিডি সদস্যদের মধ্যে দ্বিতীয় সর্বনিম্ন।Federica Cocco. Israel and the US have the highest poverty rates in the developed world . Financial Times. Published on 19 October 2016. চেক প্রজাতন্ত্র ২০২১ সালের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা সূচকে ২৭শ, ২০১৬ সালের গ্লোবাল ইনোভেশন সূচকে ২৪শ, গ্লোবাল কম্পিটিটিভনেস রিপোর্টে ২৯শ, ইজ অব ডুয়িং বিজনেস সূচকে ৪১শ এবং গ্লোবাল এবলিং ট্রেড রিপোর্টে ২৫শ স্থানে রয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্রের একটি বৈচিত্র্যময় অর্থনীতি রয়েছে যা ২০১৬ সালের অর্থনৈতিক জটিলতা সূচকে ৭ম স্থানে রয়েছে। শিল্প খাত অর্থনীতির ৩৭.৫ শতাংশ এর জন্য দায়ী; এছাড়া পরিষেবাগুলি ৬০ শতাংশ এবং কৃষি রয়েছে ২.৫ শতাংশ। আমদানি ও রপ্তানি উভয় ক্ষেত্রেই সবচেয়ে বড় বাণিজ্যিক অংশীদার হল জার্মানি এবং সাধারণভাবে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। ২০১৭ সালে চেক কোম্পানীর বিদেশী মালিকদের ২৭০ বিলিয়ন চেক কোরুনা মূল্যের লভ্যাংশ প্রদান করা হয়, যা একটি রাজনৈতিক ইস্যুতে পরিণত হয়েছিলো। ২০০৪ সালের ১ মে থেকে দেশটি শেনজেন অঞ্চলের সদস্য। ২১ ডিসেম্বর ২০০৭ সালে সীমান্ত নিয়ন্ত্রণ বিলুপ্ত করে দেশটি তার প্রতিবেশীদের সাথে সীমানা সম্পূর্ণরূপে খুলে দেয়। শিল্প left|thumb|১৯৯৬ এর স্কোডা অক্টাভিয়া রাজস্বের হিসাবে ২০১৮ সালে চেক প্রজাতন্ত্রের বৃহত্তম কোম্পানিগুলো ছিলো: অটোমোবাইল প্রস্তুতকারক স্কোডা অটো, ইউটিলিটি কোম্পানি সিইজেড গ্রুপ, অ্যাগ্রোফার্ট , শক্তি বাণিজ্য কোম্পানি ইপিএইচ, তেল প্রক্রিয়াকরণ সংস্থা ইউনিপেট্রোল, ইলেকট্রনিক্স প্রস্তুতকারক ফক্সকন সিজেড এবং ইস্পাত প্রস্তুতকারক মোরাভিয়া স্টিল। অন্যান্য চেক পরিবহন সংস্থাগুলোর মধ্যে রয়েছে: এসকোডা ট্রান্সপোর্টেশন (ট্রামওয়েজ, ট্রলিবাস, মেট্রো), টাট্রা (ভারী ট্রাক, বিশ্বের দ্বিতীয় প্রাচীনতম গাড়ি নির্মাতা), এভিয়া (মাঝারি ট্রাক), কারোসা এবং এসওআর লিবচাভি (বাস), এরো ভডোচোডি (সামরিক বিমান), লেট কুনোভিস (বেসামরিক বিমান), জেটর (ট্রাক্টর), জাওয়া মোটো (মোটরসাইকেল) এবং চেজেটা (বৈদ্যুতিক স্কুটার)। এসকোডা ট্রান্সপোর্টেশন বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম ট্রাম উৎপাদক। বিশ্বের প্রায় এক-তৃতীয়াংশ ট্রাম চেক কারখানা থেকে আসে। এছাড়া চেক প্রজাতন্ত্র বিশ্বের বৃহত্তম ভিনাইল রেকর্ড প্রস্তুতকারক। জিজেড মিডিয়া লোডিনিসে বার্ষিক প্রায় ৬ মিলিয়ন টুকরা রেকর্ড উৎপাদন করে। চেস্কা ব্রোয়োভকা বিশ্বের দশটি বৃহত্তম আগ্নেয়াস্ত্র উৎপাদকের মধ্যে অন্যতম এবং স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র উৎপাদকদের মধ্যে পঞ্চম। খাদ্য শিল্পে সফল কোম্পানিগুলো হলো অ্যাগ্রোফার্ট, কোফোলা এবং হামে। শক্তি thumb|ডুকোভানি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র চেক প্রজাতন্ত্রের বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা চাহিদার তুলনায় প্রায় ১০ টেরাওয়াট ঘন্টা বেশি। অতিরিক্ত এ অংশ অন্য দেশে রপ্তানি করা হয়। পারমাণবিক শক্তি বর্তমানে মোট বিদ্যুৎ চাহিদার প্রায় ৩০ শতাংশ সরবরাহ করে, যা ৪০ শতাংশে উন্নীত হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ২০০৫ সালে, উৎপাদিত বিদ্যুতের ৬৫.৪ শতাংশ বাষ্প ও জ্বলন কেন্দ্র (বেশিরভাগ কয়লা) দ্বারা, ৩০ শতাংশ পারমাণবিক কেন্দ্র দ্বারা এবং ৪.৬ শতাংশ নবায়নযোগ্য উৎস (জলবিদ্যুৎ সহ) দ্বারা উৎপাদিত হয়েছিলো । চেক প্রজাতন্ত্রের সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ কেন্দ্র টেমেলিন নিউক্লিয়ার পাওয়ার স্টেশন। এছাড়া ডুকোভানিতে আরেকটি পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র রয়েছে। চেক প্রজাতন্ত্র শক্তির উৎস হিসাবে অত্যন্ত দূষিত নিম্ন-মানের বাদামী কয়লার উপর নির্ভরতা ক্রমাগত হ্রাস করছে। প্রাকৃতিক গ্যাসের বেশিরভাগ অংশ (গার্হস্থ্য প্রয়োজনের প্রায় তিন চতুর্থাংশ) রুশ গ্যাজপ্রম থেকে আসে এবং অবশিষ্টাংশের বেশিরভাগ অংশ নরওয়েজীয় কোম্পানীর কাছ থেকে সংগ্রহ করা হয়। রাশিয়ার গ্যাস ইউক্রেনের মধ্য দিয়ে এবং নরওয়েজীয় গ্যাস জার্মানির মধ্য দিয়ে পরিবহন করা হয়। সাধারণত গ্যাসের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ পরিমাণ বিদ্যুৎ খরচ করা হয়। দক্ষিণ মোরাভিয়ায় ছোট ছোট তেল ও গ্যাসের খনি রয়েছে। পরিবহন অবকাঠামো thumb|ভাস্লাভ হাভেল বিমানবন্দর, প্রাগ , চেক প্রজাতন্ত্রের সড়কপথ দীর্ঘ, যার মধ্যে মোটরওয়ে। গতিসীমা শহরে ৫০ কিমি/ঘন্টা, শহরের বাইরে ৯০ কিমি/ঘন্টা এবং মোটরওয়েতে ১৩০ কিমি/ঘন্টা। চেক প্রজাতন্ত্রে বিশ্বের অন্যতম ঘন রেল পরিবহন রয়েছে। ২০২০ সালের হিসাবে, দেশে রেলপথ রয়েছে, যার মধ্যে বিদ্যুতায়িত, একক রেলপথ এবং দ্বৈত ও বহু-লাইন বিশিষ্ট। রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য , যার মধ্যে বিদ্যুতায়িত। চেস্কে ড্রাহি (চেক রেলপথ) দেশের প্রধান রেলপথ পরিচালক, যার মাধ্যমে বার্ষিক প্রায় ১৮০ মিলিয়ন যাত্রী চলাচল করে। সর্বোচ্চ গতি ঘণ্টায় ১৬০ কিলোমিটারের মধ্যে সীমাবদ্ধ। প্রাগের ভাস্লাভ হাভেল বিমানবন্দরটি দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। ২০১৯ সালে এটি ১৭.৮ মিলিয়ন যাত্রী পরিচালনা করেছে। চেক প্রজাতন্ত্রে মোট ৯১ টি বিমানবন্দর রয়েছে, যার মধ্যে আন্তর্জাতিক বিমান পরিষেবা সরবরাহ করে ছয়টি। পাবলিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলি ব্রানো, কার্লোভি ভ্যারি, মনিকোভো হার্ডিসটিজি, মোসনভ (অস্ট্রাভার কাছে), পারডুবিস এবং প্রাগে অবস্থিত। এয়ারলাইন পরিচালনায় সক্ষম নন-পাবলিক আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলি কুনোভিস এবং ভডোচডিতে অবস্থিত। যোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি thumb|অ্যান্টিভাইরাস গ্রুপ অ্যাভাস্ট এর প্রতিষ্ঠাতা ও মালিক চেক প্রজাতন্ত্র সর্বোচ্চ গড় ইন্টারনেট গতিবিশিষ্ট শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে। ২০০৮ সালের শুরুতে, ৮০০ টিরও বেশি স্থানীয় ডব্লিউআইএসপি এবং ২০০৭ সালে প্রায় ৩৫০,০০০ গ্রাহক ছিলো। পরিকল্পনাগুলি তিনটি মোবাইল ফোন অপারেটর (টি-মোবাইল, ওটু, ভোডাফোন) এবং ইন্টারনেট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান ইউ-ফন জিপিআরএস, এজ, ইউএমটিএস বা সিডিএমএ ২০০০ ভিত্তিক পরিষেবা প্রদান করছে। সরকারী মালিকানাধীন চেস্কি টেলিকম আস্র পর ব্রডব্যান্ডের অনুপ্রবেশকে হ্রাস পায়। ২০০৪ সালের শুরুতে, লোকাল-লুপ আনবান্ডলিং শুরু হয় এবং বিকল্প অপারেটররা অপ্রতিসম ডিজিটাল গ্রাহক লাইন (এডিএসএল) এবং প্রতিসম ডিজিটাল গ্রাহক লাইন (এসডিএসএল) সরবরাহ করা শুরু করে। এই ঘটনা এবং পরবর্তীকালে চেস্কি টেলিকমের বেসরকারীকরণ ইন্টারনেটের দাম কমাতে সাহায্য করেছে। ১ জুলাই ২০০৬ তারিখে, বৈশ্বিক (স্পেনীয় মালিকানাধীন) কোম্পানি টেলিফোনিকা গ্রুপ (বর্তমানে ওটু চেক প্রজাতন্ত্র) এসকিউ টেলিকম ক্রয় করে। , ভিডিএসএল এবং এডিএসএলটু+, সেকেন্ডে ৫০ মেগাবিট পর্যন্ত ডাউনলোড গতি এবং সেকেন্ডে ৫ মেগাবিট পর্যন্ত আপলোড গতি প্রদান করে। কেবল ইন্টারনেট তার উচ্চতর ডাউনলোড গতির কারণে (সেকেন্ডে ৫০ মেগাবিট থেকে সেকেন্ডে ১ গিগাবিট পর্যন্ত) জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। দুটি কম্পিউটার নিরাপত্তা সংস্থা, অ্যাভাস্ট এবং এভিজি চেক প্রজাতন্ত্রে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। ২০১৬ সালে পাভেল বাউডিসের নেতৃত্বে অ্যাভাস্ট তার প্রতিদ্বন্দ্বী এভিজি কোম্পানিকে ১.৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে কিনে নেয়। সেসময়ে সংস্থা দুটির প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ব্যবহারকারী বেস ছিলো এবং চীনের বাইরে ভোক্তা বাজারের শতকরা প্রায় ৪০ ভাগ এদের দখলে ছিলো। অ্যাভাস্ট হচ্ছে অ্যান্টি-ভাইরাস সরবরাহকারীদের মধ্যে নেতৃত্বস্থানীয়, যার ২০.৫ শতাংশ বাজার শেয়ার রয়েছে। পর্যটন thumb|মধ্যযুগীয় দুর্গ কার্লস্টেইন লন্ডন, প্যারিস, ইস্তাম্বুল এবং রোমের পরে প্রাগ ইউরোপের পঞ্চম সর্বাধিক পরিদর্শিত শহর। ২০০১ সালে পর্যটন থেকে মোট আয় ছিলো ১১৮ বিলিয়ন চেক কোরুনা, যা জিএনপির ৫.৫ শতাংশ এবং সামগ্রিক রপ্তানি আয়ের ৯ শতাংশ। এই শিল্পে ১,১০,০০০ এরও বেশি লোক কাজ করে (জনসংখ্যার ১% এরও বেশি)। ভ্রমণপঞ্জিতে এবং পর্যটকদের কাছে প্রাগে ট্যাক্সিচালক কর্তৃক অতিরিক্ত ভাড়াগ্রহণ এবং পকেটমার সমস্যা বিষয়ে অভিযোগ পাওয়া যেত। ২০০৫ সাল থেকে প্রাগের মেয়র পাভেল বেম ছোটখাটো অপরাধের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ায় সাম্প্রতিক সময়ে পরিস্থিতির উন্নতি হয়েছে। এই সমস্যাগুলি বাদে প্রাগ একটি "নিরাপদ" শহর। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য বিভাগ চেক প্রজাতন্ত্রের অপরাধ হার "কম" হিসাবে বর্ণনা করেছে। চেক প্রজাতন্ত্রের পর্যটন আকর্ষণগুলির মধ্যে অন্যতম অস্ট্রাভার নেথার জেলা ভিটকোভিস। চেক প্রজাতন্ত্রে ১৬টি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান রয়েছে, যার মধ্যে ৩টি আন্তর্জাতিক। , আরও ১৪ টি স্থান অস্থায়ী তালিকায় রয়েছে। left|thumb|চেস্কি ক্রামলভ স্থাপত্য ঐতিহ্য দর্শকদের আগ্রহের একটি বস্তু - যার মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ঐতিহাসিক সময়ের দুর্গ, যেমন কার্লস্টেইন দুর্গ, চেস্কি ক্রামলভ এবং লেডনিস-ভাল্টিস সাংস্কৃতিক দৃশ্যপট। এখানে ১২টি ক্যাথিড্রাল এবং ১৫টি গির্জা রয়েছে যা পোপ কর্তৃক ব্যাসিলিকা পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। শহর থেকে দূরে, বোহেমিয়ান প্যারাডাইস, বোহেমীয় অরণ্য ও জায়ান্ট পর্বতমালার মতো অঞ্চলগুলো বহিরঙ্গন সন্ধানকারী দর্শনার্থীদের আকর্ষণ করে। এখানে বেশ কয়েকটি বিয়ার উৎসব উদযাপিত হয়। দেশটি এর অসংখ্য জাদুঘরের জন্যও পরিচিত। সারা দেশে বেশ কয়েকটি পুতুল নাচ প্রদর্শনী ও পুতুল উৎসব অনুষ্ঠিত হয়। চেস্টলিসের অ্যাকোয়াপ্যালেস প্রাগ দেশের বৃহত্তম সলিলপার্ক। বিজ্ঞান thumb|234x234px|নোবেল পুরস্কার বিজয়ী রসায়নবিদ ইয়ারোস্লাভ হেইরোভস্কি চেক ভূমির বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের একটি দীর্ঘ এবং সু-নথিভুক্ত ইতিহাস রয়েছে। বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্রের একটি অত্যন্ত পরিশীলিত, উন্নত, উচ্চ-সম্পাদনশীল, উদ্ভাবন-ভিত্তিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায় বিদ্যমান। সরকার, শিল্প এবং নেতৃস্থানীয় চেক বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এর পৃষ্ঠপোষক। চেক বিজ্ঞানীরা বৈশ্বিক বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের সদস্য। তারা প্রতি বছর একাধিক আন্তর্জাতিক একাডেমিক সাময়িকীতে অবদান রাখে এবং দেশ ও ক্ষেত্রের সীমানা পেড়িয়ে বিভিন্ন ব্যক্তিবর্গের সাথে একত্রে কাজ করে থাকে। চেক প্রজাতন্ত্র ২০১৯ সালে বৈশ্বিক উদ্ভাবন সূচকে ২৬শ স্থানে ছিল; ২০২০ ও ২০২১ সালে যা উন্নীত হয় ২৪শ স্থানে। ঐতিহাসিকভাবে, চেক ভূমি বিশেষ করে প্রাগ, বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের অন্যতম জন্মস্থল ছিলো, যা টাইকো ব্রাহে, নিকোলাস কোপার্নিকাস এবং ইয়োহানেস কেপলার সহ প্রারম্ভিক আধুনিক যুগ পর্যন্ত বিস্তৃত। ১৭৮৪ সালে রয়েল চেক সোসাইটি অফ সায়েন্সেস নামের অধীনে বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়টি প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে সংগঠিত হয়। বর্তমানে প্রতিষ্ঠানটি চেক একাডেমি অব সায়েন্সেস নামে পরিচিত। একইভাবে, চেক ভূমিতে বিজ্ঞানীদের একটি সুপ্রতিষ্ঠিত ইতিহাস রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছেন নোবেল বিজয়ী জৈব রসায়নবিদ গার্টি এবং কার্ল ফার্দিনান্দ কোরি, রসায়নবিদ ইয়ারোস্লাভ হেরোভস্কি, রসায়নবিদ অটো উইচটারলে, পদার্থবিদ পিটার গ্রুনবার্গ এবং রসায়নবিদ অ্যান্টোনিন হোলি। মনোবিশ্লেষণের প্রতিষ্ঠাতা সিগমুন্ড ফ্রয়েড প্রিবোরে জন্মগ্রহণ করেন, জিনতত্ত্বের প্রতিষ্ঠাতা গ্রেগর ইয়োহান মেন্ডেল হাইনচিসে জন্মগ্রহণ করেন এবং তার জীবনের বেশিরভাগ সময় কাটিয়েছিলেন বার্নোতে। [[File:ELI Beamlines building in Dolní Břežany.jpg|thumb|ডোলনি ব্রেজানিতে অবস্থিত এলি বিমলাইনস সায়েন্স সেন্টার, যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী লেজার অবস্থিত]] বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক গবেষণা লাতিন বা জার্মান ভাষায় রেকর্ড করা হয়েছিল এবং ধর্মীয় গোষ্ঠী এবং অন্যান্য সম্প্রদায় কর্তৃক পরিচালিত গ্রন্থাগারগুলিতে সংরক্ষণাগারভুক্ত করা হয়েছিল। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ঐতিহ্যবাহী ও ঐতিহাসিক স্থান যেমন স্ট্রাহভ মঠ এবং প্রাগের ক্লেমেন্টিনামে এর প্রমাণ রয়েছে। ক্রমান্বয়ে চেক বিজ্ঞানীরা তাদের কাজ এবং তাদের ইতিহাস ইংরেজিতে প্রকাশ করা শুরু করে। বর্তমান গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠান হল চেক একাডেমী অব সায়েন্সেস, বার্নোতে অবস্থিত সেন্ট্রাল ইউরোপিয়ান ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি এবং ডলনি বিওয়েনিতে অবস্থিত বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিশালী লেজার কেন্দ্র এলি বিমলাইনস। প্রাগ হল জিএসএ এজেন্সির প্রশাসনিক কেন্দ্রের আসন যা ইউরোপীয় নেভিগেশন সিস্টেম গ্যালিলিও (স্যাটেলাইট নেভিগেশন সিস্টেম) এবং ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এজেন্সি ফর দ্য স্পেস প্রোগ্রাম পরিচালনা করে। জনসংখ্যাতত্ত্ব ২০২০ সালের অনুমিত মোট উর্বরতার হার (টিএফআর) ছিল ১.৭১, যা প্রতিস্থাপন হার ২.১ এর চেয়ে কম। চেক প্রজাতন্ত্রের জনসংখ্যার গড় বয়স ৪৩.৩ বছর। ২০২১ সালে অনুমিত গড় আয়ু ৭৯.৫ বছর (পুরুষ ৭৬.৫৫ বছর, মহিলা ৮২.৬১ বছর)। বছরে প্রায় ৭৭,০০০ জন মানুষ চেক প্রজাতন্ত্রে অভিবাসী হয়।"Press: Number of foreigners in ČR up ten times since 1989". Prague Monitor. 11 November 2009. ভিয়েতনামী অভিবাসীরা কমিউনিস্ট আমলে দেশটিতে বসতি স্থাপন করতে শুরু করে, যখন চেকোস্লোভাক সরকার তাদের অতিথি শ্রমিক হিসেবে আমন্ত্রণ জানায়। ২০০৯ সালে চেক প্রজাতন্ত্রে প্রায় ৭০,০০০ ভিয়েতনামী ছিল। বেশিরভাগই স্থায়ীভাবে দেশে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়। ২০২১ সালের জনশুমারির ফলাফল অনুযায়ী, চেক প্রজাতন্ত্রের বেশিরভাগ অধিবাসী চেক (৫৭.৩ শতাংশ)। এছাড়া রয়েছে মোরাভীয় (৩.৪ শতাংশ), স্লোভাক (০.৯ শতাংশ), ইউক্রেনীয় (০.৭ শতাংশ), ভিয়েত (০.৩ শতাংশ), পোল (০.৩ শতাংশ), রুশ (০.২ শতাংশ), সিলেসিয়ান (০.১ শতাংশ) এবং জার্মান (০.১ শতাংশ)। অন্য ৪.০ শতাংশ দ্বৈত জাতীয়তার (৩.৬ শতাংশ চেক এবং অন্যান্য জাতীয়তার সংমিশ্রণ) পরিচয় দিয়েছে। যেহেতু 'জাতীয়তা' একটি ঐচ্ছিক বিষয় ছিল, তাই বেশ কিছু লোক এই ক্ষেত্রটি খালি (৩১.৬ শতাংশ) রেখেছিল। কিছু অনুমান অনুসারে, চেক প্রজাতন্ত্রে প্রায় ২৫০,০০০ রোমানি লোক রয়েছে। পোলিশ সংখ্যালঘুরা প্রধানত জাওলজি অঞ্চলে বাস করে। চেক পরিসংখ্যান কেন্দ্রের মতে, ২০১৬ সালে দেশটিতে ৪,৯৬,৪১৩ জন (জনসংখ্যার ৪.৫ শতাংশ) বিদেশী বসবাসরত ছিল, যার মধ্যে বৃহত্তম দল ইউক্রেনীয় (২২ শতাংশ), স্লোভাক (২২ শতাংশ), ভিয়েত (১২ শতাংশ), রুশ (৭ শতাংশ) এবং জার্মান (৪ শতাংশ)। বিদেশী জনসংখ্যার বেশিরভাগই প্রাগ অঞ্চলে (৩৭.৩ শতাংশ) এবং কেন্দ্রীয় বোহেমিয়া অঞ্চলে (১৩.২ শতাংশ) বাস করে। বোহেমিয়া এবং মোরাভিয়ার ইহুদি জনসংখ্যা (১৯৩০ সালের জনশুমারি অনুযায়ী ১,১৮,০০০ জন) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ইহুদি গণহত্যার সময় নাৎসি জার্মানি দ্বারা প্রায় ধ্বংস হয়ে গিয়েছিল। ২০২১ সালে চেক প্রজাতন্ত্রে প্রায় ৩,৯০০ জন ইহুদি ছিল। সাবেক চেক প্রধানমন্ত্রী ইয়ান ফিশার ইহুদি ধর্মাবলম্বী। চেক অধিবাসীদের জাতীয়তা (যারা ২০২১ সালের জনশুমারিতে এই প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে): +জাতীয়তাশতকরাচেক৮৩.৭৬মোরাভীয়৪.৯৯চেক এবং মোরাভীয়২.০০স্লোভাক১.৩৩ইউক্রেনীয়১.০৮চেক এবং স্লোভাক০.৮২ভিয়েত০.৪৪পোল০.৩৭রুশ০.৩৫অন্যান্য৪.৩৬ বৃহত্তর শহরসমূহ ধর্ম জরিপে চেক প্রজাতন্ত্রের প্রায় শতকরা ৭৫ ভাগ থেকে ৭৯% ভাগ অধিবাসী কোন ধর্ম বা বিশ্বাস অন্তর্ভুক্ত করে না। বসবাসরত নিশ্চিত নাস্তিক জনসংখ্যার অনুপাত (৩০ শতাংশ), চীন (৪৭ শতাংশ) ও জাপান (৩১ শতাংশ ) এর পরে বিশ্বের তৃতীয় সর্বোচ্চ। চেক জনগণ ঐতিহাসিকভাবে "সহনশীল এবং এমনকি ধর্মের প্রতি উদাসীন" হিসেবে চিহ্নিত।Richard Felix Staar, ''Communist regimes in Eastern Europe'', Issue 269, p. 90 thumb|চেক ভূমির পৃষ্ঠপোষক সন্ত, সেন্ট ওয়েন্সেসলাস ৯ম ও ১০ম শতাব্দীর খ্রিষ্টীয়করণের মাধ্যমে ক্যাথলিক মণ্ডলীর প্রবর্তন হয়। বোহেমিয়ান সংস্কারের পর চেক জনগণের বেশিরভাগ ইয়ান হুস, পেট্রা খেলচিস্কি ও অন্যান্য আঞ্চলিক প্রোটেস্ট্যান্ট সংস্কারকদের অনুসারী হয়ে ওঠে। ট্যাবোরাট এবং ইউট্রাকুইস্টরা হুসাইট গ্রুপ ছিল। হুসাইট যুদ্ধের শেষের দিকে, উট্রাকুইস্টরা পক্ষ পরিবর্তন করে এবং ক্যাথলিক চার্চের সাথে মিত্রতা করে। যৌথ উট্রাকুইস্ট-ক্যাথলিক বিজয়ের পরে, ক্যাথলিক চার্চ বোহেমিয়াতে অনুশীলনের জন্য উট্রাকুইজমকে খ্রিস্টধর্মের একটি স্বতন্ত্র রূপ হিসাবে গ্রহণ করে এবং অবশিষ্ট সমস্ত হুসাইট গ্রুপকে নিষিদ্ধ করে। সংস্কারের পর, কিছু বোহেমিয়ান (বিশেষ করে সুদাতেন জার্মানরা) মার্টিন লুথারের শিক্ষা গ্রহণ করে। সংস্কারের পরিপ্রেক্ষিতে, উট্রাকুইস্ট হুসাইটরা নতুন ক্রমবর্ধমান ক্যাথলিক বিরোধী অবস্থান গ্রহণ করে এবং কিছু পরাজিত হুসাইট দল পুনরুজ্জীবিত হয়। হাবসবার্গরা বোহেমিয়ার নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়ার পর পুরো জনসংখ্যাকে জোর করে ক্যাথলিক ধর্মে রূপান্তরিত করা হয়। উট্রাকুইস্ট হুসাইটরাও এর থেকে বাদ যায়নি। ক্রমাগত, চেকরা ধর্মের ব্যাপারে আরও সতর্ক ও হতাশাবাদী হয়ে ওঠে। ক্যাথলিক চার্চের বিরুদ্ধে একটি প্রতিরোধ গড়ে ওঠে। এটি ১৯২০ সালে নব্য-হুসাইট চেকোস্লোভাক হুসাইট চার্চের সাথে একটি বিভেদের শিকার হয়। কমিউনিস্ট যুগে অনুসারীদের বেশিরভাগ অংশই হারিয়ে গিয়েছে এবং আধুনিক চলমান ধর্মনিরপেক্ষতার সময়কালেও তারা হারিয়ে যাচ্ছে। ১৬২০ সালে অস্ট্রিয় হাবসবার্গ কর্তৃক সংস্কারবিরোধী আন্দোলন প্রবর্তনের পরে প্রোটেস্ট্যান্টিজম আর কখনও পুনরুদ্ধার হয়নি। ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, জনসংখ্যার ৩৪ শতাংশ কোন ধর্ম বিহীন, ১০.৩ শতাংশ ক্যাথলিক, ০.৮ শতাংশ প্রোটেস্ট্যান্ট (০.৫ শতাংশ চেক ভ্রাতৃদ্বয় এবং ০.৪ শতাংশ হুসাইট)The Czechoslovak Hussite Church contains mixed Protestant, Catholic, Eastern Orthodox and national elements. Classifying it as either one is disputable. For more details and dispute about this, see Czechoslovak Hussite Church. এবং ৯ শতাংশ ধর্মের অন্যান্য সম্প্রদায়গত বা অসম্প্রদায়গত রূপ অনুসরণ করে (যার মধ্যে ৮৬৩ জন উত্তর দিয়েছিল যে তারা পৌত্তলিক)। ৪৫ শতাংশ মানুষ ধর্ম বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর দেয়নি। ১৯৯১ থেকে ২০০১ এবং পরে ২০১১ সাল পর্যন্ত ক্যাথলিকধর্মের প্রতি আনুগত্য ৩৯ শতাংশ থেকে ২৭ শতাংশ এবং পরে ১০ শতাংশে হ্রাস পেয়েছে। প্রোটেস্ট্যান্টবাদ একইভাবে ৩.৭ শতাংশ থেকে ২ শতাংশ এবং তারপরে ০.৮ শতাংশে নেমে আসে। মুসলিম জনসংখ্যা আনুমানিক ২০,০০০ জন (জনসংখ্যার শতকরা ০.২ ভাগ)। দেশব্যাপী ধর্মীয় বিশ্বাসীদের অনুপাত উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়; জিলিন অঞ্চলে অনুপাত ৫৫ শতাংশ এবং উস্তি নাদ লাবেম অঞ্চলে ১৬ শতাংশ। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা left|thumb|১৩৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত চার্লস বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাচীনতম অংশ চেক প্রজাতন্ত্রে শিক্ষা নয় বছরের জন্য বাধ্যতামূলক এবং নাগরিকদের জন্য অবৈতনিক বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষাসুবিধা বিদ্যমান। শিক্ষার সময়কাল গড়ে ১৩.১ বছর। উপরন্তু, ইউরোপের অন্যান্য দেশের তুলনায় চেক প্রজাতন্ত্রে একটি "তুলনামূলকভাবে সমান" শিক্ষা ব্যবস্থা রয়েছে। ১৩৪৮ সালে প্রতিষ্ঠিত চার্লস বিশ্ববিদ্যালয় মধ্য ইউরোপের প্রথম বিশ্ববিদ্যালয়। দেশের অন্যান্য প্রধান বিশ্ববিদ্যালয়গুলি হল মাসারিক বিশ্ববিদ্যালয়, চেক প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, পালাস্কি বিশ্ববিদ্যালয়, একাডেমি অফ পারফর্মিং আর্টস এবং ইউনিভার্সিটি অফ ইকোনমিক্স। অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থা (ওইসিডি) কর্তৃক সমন্বিত আন্তর্জাতিক ছাত্র মূল্যায়নের প্রোগ্রাম, চেক প্রজাতন্ত্রের শিক্ষা ব্যবস্থাকে ১৫শ সবচেয়ে সফল হিসেবে স্থান দিয়েছে, যা ওইসিডি গড়ের চেয়ে বেশি। জাতিসংঘের শিক্ষা সূচকে ২০১৩ সালের হিসাবে চেক প্রজাতন্ত্র ১০ম স্থানে রয়েছে (ডেনমার্কের পিছনে এবং দক্ষিণ কোরিয়ার চেয়ে এগিয়ে)। চেক প্রজাতন্ত্রের স্বাস্থ্যসেবা অন্যান্য উন্নত দেশগুলোর মানের অনুরূপ। চেক বৈশ্বিক স্বাস্থ্যসেবা ব্যবস্থা একটি বাধ্যতামূলক বীমা মডেলের উপর ভিত্তি করে তৈরি করা হয়েছে। বাধ্যতামূলক 'কর্মসংস্থান সম্পর্কিত বীমা' দ্বারা অর্থায়নকৃত অর্থের বিনিময়ে সেবা ব্যবস্থা চালু রয়েছে। ২০১৬ ইউরো স্বাস্থ্য ভোক্তা সূচক (ইউরোপে স্বাস্থ্যসেবার তুলনার মাধ্যম) অনুযায়ী, চেক স্বাস্থ্যসেবা ১৩শ স্থানে রয়েছে (সুইডেনের থেকে এক ধাপ পিছনে এবং যুক্তরাজ্যের চেয়ে দুই ধাপ এগিয়ে)। সংস্কৃতি শিল্প ডলনি ভিস্টোনিসের ভেনাস প্রাগৈতিহাসিক শিল্পের একটি সম্পদ। গথিক যুগের একজন চিত্রশিল্পী ছিলেন প্রাগের থিওডোরিক যিনি কার্লস্টেইন দুর্গ সজ্জিত করেন। বারোক যুগের কিছু শিল্পী হলেন ভাস্লাভ হলার, ইয়ান কুপেস্কি, কারেল স্ক্রেটা, আন্তন রাফায়েল মেংস অথবা পেট্রা ব্রান্ডেল, ভাস্কর ম্যাথিয়াস ব্রন এবং ফার্ডিনান্ড ব্রকফ। উনিশ শতকের প্রথমার্ধে যোসেফ মানেস রোমান্টিক আন্দোলনে যোগ দেন। ঊনবিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধের প্রধান ব্যক্তিবর্গ তথাকথিত "জাতীয় থিয়েটার প্রজন্ম": ভাস্কর জোসেফ ভাস্লাভ মাইসলবেক এবং চিত্রশিল্পী মিকোলাশ আলেশ, ভাস্লাভ ব্রোজিক, ভোইটেখ হিনাইস অথবা জুলিয়াস মারাক। শতাব্দীর শেষের দিকে আধুনিক শিল্পের একটি জোয়ার আসে। আলফন্স মুকা হয়ে ওঠেন এর প্রধান প্রতিনিধি। তিনি আধুনিক শিল্পের অন্তর্ভুক্ত পোস্টার এবং স্লাভ এপিক নামে ২০টি বড় ক্যানভাসের শিল্পকর্মের জন্য পরিচিত, যা চেক এবং অন্যান্য স্লাভদের ইতিহাসকে চিত্রিত করে। , স্লাভ এপিকটি প্রাগের জাতীয় গ্যালারীর ভেলেট্রিনি প্যালেসে প্রদর্শিত হয়। স্থাপনাটি চেক প্রজাতন্ত্রের শিল্পের বৃহত্তম সংগ্রহশালা পরিচালনা করে। ম্যাক্স শ্ভাবিনস্কি ছিলেন আরেকজন আধুনিক চিত্রশিল্পী। বিংশ শতাব্দীতে একটি নিরীক্ষাধর্মী বিপ্লব (আভান্ট-গার্ডে) ঘটে। এসময় চেক শিল্পে অভিব্যক্তিবাদী এবং কিউবিস্ট (জ্যামিতিক চিত্রকার) ছিলেন জোসেফ উপেক, এমিল ফিলা, বোহুমিল কুবিস্তা এবং ইয়ান জারজাভি। মূলত টয়েন, জোসেফ শিমা এবং কারেল টেইগের কাজের মাধ্যমে পরাবাস্তববাদের আবির্ভাব ঘটে। এছাড়া ফ্রান্টিশেক কুপকা ছিলেন বিমূর্ত শিল্পের অগ্রদূত। বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগে জোসেফ লাডা, জেনেক বারিয়ান কিংবা এমিল ওরলিক অঙ্কনশিল্পী ও কার্টুনিস্ট হিসেবে জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। ফ্রানটিশেক ডরটিকোল, জোসেফ সুডেক এবং পরবর্তীতে ইয়ান সাউডেক কিংবা জোসেফ কুডেলকার হাত ধরে আলোকচিত্র শিল্প নামের এক নতুন ক্ষেত্র গড়ে ওঠে। চেক প্রজাতন্ত্র এর স্বতন্ত্রভাবে তৈরি, মুখ-বিস্ফোরিত এবং সজ্জিত বোহেমিয়ান গ্লাসের জন্য পরিচিত। স্থাপত্য thumb|প্রাগের ঐতিহাসিক কেন্দ্র বোহেমিয়া এবং মোরাভিয়ার প্রাচীনতম সংরক্ষিত পাথরের ভবনগুলো নবম ও দশম শতাব্দীতে খ্রিস্টীয়করণের সময়কালে নির্মিত। মধ্যযুগ থেকে, চেক ভূমি পশ্চিম ও মধ্য ইউরোপের মতো একই স্থাপত্য শৈলী ব্যবহার করে আসছে। বিদ্যমান প্রাচীনতম গির্জাগুলি রোমান শৈলীতে নির্মিত হয়েছিল। ত্রয়োদশ শতাব্দী থেকে তার স্থান দখল করে গথিক শৈলী। চতুর্দশ শতাব্দীতে সম্রাট চতুর্থ চার্লস ফ্রান্স ও জার্মানি থেকে স্থপতিদের (আরাসের ম্যাথিয়াস এবং পিটার পার্লার) প্রাগে তার দরবারে আমন্ত্রণ জানান। মধ্যযুগে, রাজা এবং অভিজাতবর্গের হাত ধরে কিছু দুর্গ ও মঠ তৈরি হয়। ১৫ শতকের শেষের দিকে বোহেমীয় সাম্রাজ্যে রেনেসাঁ শৈলী প্রবেশ করে এবং এর উপাদানগুলো পুরানো গথিক শৈলীর সাথে মিশ্রিত হতে শুরু করে। বোহেমিয়ার বিশুদ্ধ রেনেসাঁ স্থাপত্যের একটি উদাহরণ হল রানী অ্যানের গ্রীষ্মকালীন প্রাসাদ, যা প্রাগ প্রাসাদের বাগানে অবস্থিত ছিল। তোরণ আঙ্গিনা এবং জ্যামিতিকভাবে সাজানো বাগানযুক্ত প্রশস্ত বাগানবাড়ির স্থাপনায় ইতালীয় স্থপতিদের স্পষ্ট অবদান রেনেসাঁর সাধারণ পরিগ্রহণের উদাহরণ। নির্মাণের ক্ষেত্রে স্বাচ্ছন্দ্যের উপর জোর দেওয়া হয়েছিল এবং বিনোদনের উদ্দেশ্যে ভবন নির্মাণ এসময় শুরু হয়। সপ্তদশ শতাব্দীতে বোহেমিয়া সাম্রাজ্যজুড়ে বারোক শৈলী ছড়িয়ে পড়ে। অষ্টাদশ শতাব্দীতে বোহেমিয়া বারোক-গথিক শৈলী নামের একটি বিশেষ স্থাপত্যশৈলী গঠন করে যা গথিক ও বারোক শৈলীর সংশ্লেষণে তৈরি হয়। thumb|left|চেক শিল্পীরা স্থাপত্য এবং ফলিত শিল্পকলায় একটি স্বতন্ত্র কিউবিস্ট শৈলী উদ্ভাবন করেন যা পরে জাতীয় চেকোস্লোভাক শৈলী রন্ডোকিউবিজমে বিকশিত হয় ঊনবিংশ শতাব্দীতে স্থাপত্য শৈলী পুনরুজ্জীবন শুরু হয়। কিছু গির্জায় তাদের অনুমিত মধ্যযুগীয় চেহারা পুনরুদ্ধার করা হয় এবং নব্য-রোমান, নব্য-গথিক এবং নব্য-রেনেসাঁ শৈলীতে ভবন নির্মিত হয়। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে চেক ভূমিতে নতুন শিল্প শৈলী আবির্ভূত হয় যার নাম আধুনিক শিল্প। বোহেমিয়া বিশ্বের স্থাপত্য ঐতিহ্যে একটি অস্বাভাবিক শৈলী উপহার দিয়েছিল আর চেক স্থপতিরা অঙ্কন ও ভাস্কর্যের কিউবিজমকে স্থাপত্যে রূপান্তরিত করার চেষ্টা করেছিল। প্রথম এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে কার্যসর্বস্বতা (ফাংশনালিজম) তার শান্ত, প্রগতিশীল রুপ নিয়ে প্রধান স্থাপত্য শৈলীর স্থান অধিগ্রহণ করে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং ১৯৪৮ সালের কমিউনিস্ট অভ্যুত্থানের পর চেকোস্লোভাকিয়ার শিল্প সোভিয়েত-প্রভাবিত হয়ে ওঠে। চেকোস্লোভাক আভান্ট-গার্ডে শৈল্পিক আন্দোলনটি ব্রাসেলস শৈলী হিসাবে পরিচিত যা ১৯৬০-এর দশকে চেকোস্লোভাকিয়ার রাজনৈতিক উদারীকরণের সময় উত্থিত হয়। ১৯৭০ ও ১৯৮০-এর দশকে নিষ্ঠুরতা শৈলী আধিপত্য বিস্তার করে। চেক প্রজাতন্ত্র আন্তর্জাতিক স্থাপত্যের অত্যাধুনিক প্রবণতা থেকেও নিজেকে দূরে রাখেনি, যার একটি উদাহরণ হল প্রাগের ডান্সিং হাউস (তানশিকি ডেম), প্রাগের গোল্ডেন এঞ্জেল বা জিলিন এর কংগ্রেস সেন্টার। প্রভাবশালী চেক স্থপতিদের মধ্যে রয়েছে পিটার পার্লার, বেনেডিক্ট রেইট, ইয়ান সান্টিনি আইচেল, কিলিয়ান ইগনাজ ডিয়েনজেনহফার, যোসেফ ফান্টা, জোসেফ হ্লাভকা, যোসেফ গশার, পাভেল ইয়ানাক, ইয়ান কোটেরা, ভেরা মাখোনিনোভা, কারেল প্রাগার, কারেল হুবাশেক, ইয়ান কাপলিস্কি, ইভা জিউকিনা, ইভা ইরিশ্না, যোসেফ প্লেস্কট। সাহিত্য thumb|right|180px|ফ্রান্‌ৎস কাফকা বর্তমান চেক অঞ্চলের সাহিত্য বেশিরভাগই চেক ভাষায় লেখা হয়েছিল। তবে লাতিন ও জার্মান কিংবা ওল্ড চার্চ স্লাভোনিকেও লেখা হয়েছিল। ফ্রাঞ্জ কাফকা চেক ও জার্মান ভাষায় দ্বিভাষিক হলেও তার লেখাগুলো (দ্য ট্রায়াল, দ্য ক্যাসেল) ছিলো জার্মান ভাষায়। ত্রয়োদশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে প্রাগের রাজকীয় আদালত জার্মান মিনেসাং ও কোর্টলি সাহিত্যের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠে। চেকের জার্মান ভাষার সাহিত্য বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে লেখা হয়। চেক সাহিত্যের বিকাশে বাইবেলের অনুবাদগুলো ভূমিকা পালন করেছিল। গীতসংহিতার (psalms) প্রাচীনতম চেক অনুবাদটি ১৩শ শতকের শেষের দিকে উদ্ভূত হয় এবং বাইবেলের প্রথম সম্পূর্ণ চেক অনুবাদ ১৩৬০ সালের দিকে শেষ হয়। ১৪৮৮ সালে প্রথম সম্পূর্ণ মুদ্রিত চেক বাইবেল প্রকাশিত হয়। মূল ভাষা থেকে অনূদিত প্রথম সম্পূর্ণ চেক বাইবেল প্রকাশিত হয় ১৫৭৯ থেকে ১৫৯৩ সালের মধ্যে। ১২শ শতকের কোডেক্স জিগাস বিশ্বের বৃহত্তম মধ্যযুগীয় পাণ্ডুলিপি যা এখনো বর্তমান। চেক ভাষার সাহিত্যকে বেশ কয়েকটি সময়কালে ভাগ করা যেতে পারে: মধ্যযুগ; হুসাইট যুগ; রেনেসাঁ মানবতাবাদ; বারোক যুগ; ১৯শ শতাব্দীর প্রথমার্ধের বোধন ও চেক পুনর্জাগরণ, ১৯শ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে আধুনিক সাহিত্য; আন্তঃযুদ্ধকালীন সময়ের আভান্ট-গার্ডে; কমিউনিজমের অন্তর্গত সময় এবং চেক প্রজাতন্ত্র। যুদ্ধবিরোধী হাস্যরসাত্মক উপন্যাস "দ্য গুড সোলজার 'শ্ভেয়িক" ইতিহাসের সবচেয়ে বেশি অনূদিত চেক ভাষার বই। আন্তর্জাতিক সাহিত্য পুরস্কার ফ্রান্‌ৎস কাফকা পুরস্কার চেক প্রজাতন্ত্রে প্রদান করা হয়। চেক প্রজাতন্ত্রে ইউরোপের সবচেয়ে ঘনসন্নিবিষ্ট গ্রন্থাগার বিদ্যমান। চেক সাহিত্য ও সংস্কৃতি জনজীবনে দুইবার বিরাট ভূমিকা পালন করেছিল, যখন চেকরা নিপীড়নের অধীনে বাস করছিল এবং রাজনৈতিক ক্রিয়াকলাপ দমন করা হয়েছিল। উভয় ক্ষেত্রে (১৯শ শতাব্দীর শুরুর দিকে এবং ১৯৬০-এর দশকে) চেকরা তাদের সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক প্রচেষ্টাকে রাজনৈতিক স্বাধীনতার সংগ্রাম এবং একটি আত্মবিশ্বাসী ও রাজনৈতিকভাবে সচেতন জাতি প্রতিষ্ঠাকল্পে ব্যবহার করেছিল। সংগীত thumb|left|180px|আন্তনিন দ্ভরাক চেক ভূমির সংগীত প্রথা গীর্জার স্তোত্রগানের মাধ্যমে সূচনা লাভ করে; ১০ম থেকে ১১শ শতাব্দীতে যার প্রমাণ পাওয়া যায়। এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে: সংগীত "প্রভু, আমাদের কৃপা করুন" (চেক: Hospodine, pomiluj ny) ও স্তোত্র "সেন্ট ওয়েন্সেসলাস" বা "সেন্ট ওয়েনসেসলাস করাল"। কিছু ইতিহাসবিদ "প্রভু, আমাদের কৃপা করুন" এর লেখক হিসেবে প্রাগের বিশপ সেন্ট অ্যাডালবার্ট (ভোইটেক নামেও পরিচিত) এর নাম উল্লেখ করেন। তিনি ৯৫৬ থেকে ৯৯৭ সালে বর্তমান ছিলেন।Dějiny české hudby v obrazech (History of Czech music in pictures); in Czech সংগীত সংস্কৃতির ঐশ্বর্য বিভিন্ন ঐতিহাসিক সময়কালের সঙ্গীত শাখা বিশেষত বারোক, ধ্রুপদী , রোমান্টিকতা, আধুনিক ধ্রুপদী এবং বোহেমিয়া, মোরাভিয়া ও সিলেসিয়ার ঐতিহ্যবাহী লোকসঙ্গীতে নিহিত। কৃত্রিম সংগীতের প্রারম্ভিক যুগ থেকে, চেক সঙ্গীতশিল্পী এবং সুরকাররা এই অঞ্চলের লোকসংগীত ও নৃত্য দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। চেক সংগীত ইউরোপ ও বিশ্ব এই উভয় প্রেক্ষাপটেই "উপকারী" হিসেবে বিবেচিত হতে পারে। উচ্চাঙ্গসংগীত এবং বারোক, রোমান্টিকতা ও আধুনিক ধ্রুপদী সংগীতের ঊর্ধ্বেও এটিকে সংগীত কলার ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের সূত্রপাত হিসেবে বিবেচনা করা সম্ভব। কিছু চেক সংগীতশিল্প হলো দ্য বার্টার্ড ব্রাইড, নিউ ওয়ার্ল্ড সিম্ফনি, সিনফোনিয়েটা এবং জেনুফা। দেশটির অন্যতম সঙ্গীত উৎসব প্রাগের বসন্তকালীন আন্তর্জাতিক উচ্চাঙ্গসংগীতের সঙ্গীতায়োজন, যা বৈশ্বিক শিল্পী, সিম্ফনি অর্কেস্ট্রা এবং চেম্বার সঙ্গীত শিল্পীদের জন্য একটি স্থায়ী প্রদর্শনী। নাট্যশালা চেক নাট্যশালার শিকড় খুঁজে পাওয়া যায় মধ্যযুগে, বিশেষত গথিক যুগের সাংস্কৃতিক জীবনে। ঊনবিংশ শতাব্দীতে নাট্যশালাটি জাতীয় জাগরণ আন্দোলনে ভূমিকা পালন করে এবং পরবর্তীতে বিংশ শতাব্দীতে এটি আধুনিক ইউরোপীয় নাট্যশিল্পের একটি অংশ হয়ে ওঠে। ১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকে মূল চেক সাংস্কৃতিক ঘটনাটি রচিত হয়। এই প্রকল্পটি ল্যাটারনা ম্যাগিকা নামে পরিচিত, যা নাট্য শিল্প, নৃত্যশিল্প এবং চলচ্চিত্রকে কাব্যিক পদ্ধতিতে একত্রিত করে প্রযোজনা করা হয়। আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে এটি প্রথম বহুমাত্রিক শিল্প প্রকল্প হিসেবে বিবেচিত হয়। কারেল শাপেকের আর. ইউ. আর. নাটকে প্রথমবারের মতো রোবট শব্দটি ব্যবহৃত হয়। চেক প্রজাতন্ত্রে পুতুল নাচের ঐতিহ্য রয়েছে। ২০১৬ সালে চেক এবং স্লোভাক পুতুলনাচকে ইউনেস্কো অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। চলচ্চিত্র thumb|160px|ক্যারেল জেম্যানের ১৯৫৮ সালের চলচ্চিত্র আ ডেডলি ইনভেশন এর আমেরিকান পোস্টার চেক চিত্রগ্রহণের ঐতিহ্য ১৮৯০-এর দশকের দ্বিতীয়ার্ধে শুরু হয়েছিল। নিরব চলচ্চিত্রের যুগের প্রযোজনার মধ্যে অন্যতম ঐতিহাসিক নাটক দ্য বিল্ডার অব দ্য টেম্পল এবং গুস্তাভ মাচাতি পরিচালিত সামাজিক ও প্রেমমূলক নাটক ইরোটিকন। শব্দযুক্ত চলচ্চিত্রের যুগ ছিল মূলধারার বিভিন্ন চলচ্চিত্র যেমন মার্টিন ফ্রিশ অথবা কারেল লামাশের হাস্যরসাত্মক প্রযোজনা দিয়ে পরিপূর্ণ। এছাড়া ছিলো নাটকীয় চলচ্চিত্র যা আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় ছিল। হার্মিনা তুর্লোভা (১১ ডিসেম্বর ১৯০০ — ৩ মে ১৯৯৩) ছিলেন একজন বিশিষ্ট চেক অ্যানিমেটর, চিত্রনাট্যকার এবং চলচ্চিত্র পরিচালক। তাকে প্রায়শই চেক অ্যানিমেশনের জননী বলা হত। তার কর্মজীবনে তিনি পুতুল এবং স্টপ মোশন অ্যানিমেশন কৌশল ব্যবহার করে ৬০ টিরও বেশি শিশুতোষ অ্যানিমেটেড ক্ষুদ্র চলচ্চিত্র নির্মাণ করেন। জার্মান দখলদারিত্বের পূর্বে, ১৯৩৩ সালে চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং অ্যানিমেটর ইরেনা ডোদালোভা তার স্বামী ক্যারেল ডোডালের সাথে প্রথম চেক অ্যানিমেশন স্টুডিও "আইআরই ফিল্ম" প্রতিষ্ঠা করেন। নাৎসি দখলদারিত্বের সময়কাল এবং ১৯৪০ ও ১৯৫০-এর দশকের শেষের দিকের চলচ্চিত্রে সমাজতান্ত্রিক বাস্তবতা প্রতিফলনের (কিছু ব্যতিক্রম যেমন, "ক্রাকাটিট" বা ১৯৪৬ সালে পাম ডি'অর বিজয়ী "মেন উইদআউট উইংস") প্রারম্ভিক কমিউনিস্ট আনুষ্ঠানিক নাটকীয়তা শেষ হওয়ার পর, অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র দিয়ে চেক চলচ্চিত্র শিল্পের একটি নতুন যুগ শুরু হয়। এগুলো ১৯৫৮ সাল থেকে "জুলস ভার্নের কল্পনাপ্রসূত বিশ্ব" শিরোনামে অ্যাংলোফোন দেশগুলিতে সঞ্চালিত হয়েছিল যাতে অভিনীত নাটক ও অ্যানিমেশনের এক সংমিশ্রণ ছিলো। এছাড়া আধুনিক পুতুল চলচ্চিত্রের প্রতিষ্ঠাতা জিজি ট্রানকাও এতে অন্তর্ভুক্ত ছিলেন। এই ঘটনা অ্যানিমেটেড চলচ্চিত্র (করটেক বা মোল চরিত্র ইত্যাদি) নির্মাণের একটি ঐতিহ্য শুরু করে। left|thumb|180px|অস্কার বিজয়ী পরিচালক মিলোশ ফরমান ১৯৬০-এর দশকে চেকোস্লোভাক নবজোয়ারের চলচ্চিত্রগুলোতে তাৎক্ষণিককৃত সংলাপ, তিক্ত এবং অযৌক্তিক হাস্যরস এবং অপেশাদার অভিনেতাদের দখল বিদ্যমান ছিল। পরিচালকরা দৃশ্যের পরিমার্জনা ও কৃত্রিম বিন্যাস ছাড়াই প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার চেষ্টা করতেন। ১৯৬০-এর দশক এবং ১৯৭০-এর দশকের শুরুর দিকের মৌলিক পাণ্ডুলিপি এবং মনস্তাত্ত্বিক প্রভাববিশিষ্ট একজন ব্যক্তিত্ব হলেন ফ্রানটিশেক ভ্লাশিল। আরেকজন আন্তর্জাতিক লেখক হলেন ইয়ান শ্বাঙ্কমায়ের, যিনি একজন চলচ্চিত্র নির্মাতা এবং শিল্পী, যার কাজ বিভিন্ন ক্ষেত্রব্যাপী বিস্তৃত। তিনি অ্যানিমেশনের জন্য পরিচিত একজন স্বঘোষিত পরাবাস্তববাদী। প্রাগের ব্যারান্ডভ স্টুডিয়োগুলি দেশের বৃহত্তম চিত্রধারণ স্থানযুক্ত চলচ্চিত্র স্টুডিয়ো। চলচ্চিত্র নির্মাতারা বার্লিন, প্যারিস এবং ভিয়েনায় পাওয়া যায় না এমন দৃশ্য ধারণের জন্য প্রাগে আসেন। কার্লোভি ভেরি শহর ২০০৬ সালের জেমস বন্ড চলচ্চিত্র ক্যাসিনো রয়েল এর দৃশ্যধারণের স্থান হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছিল। চলচ্চিত্রে বিশেষ অর্জনের জন্য সর্বোচ্চ চেক পুরস্কার দ্য চেক লায়ন। কার্লোভি ভেরি আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব অন্যতম চলচ্চিত্র উৎসব যাকে চলচ্চিত্র প্রযোজক সমিতির আন্তর্জাতিক সংঘ (এফআইএপিএফ) প্রতিযোগিতামূলক মর্যাদা দিয়েছে। দেশে অনুষ্ঠিত অন্যান্য চলচ্চিত্র উৎসবের মধ্যে রয়েছে ফেবিওফেস্ট, জিহলাভা আন্তর্জাতিক ডকুমেন্টারি ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, ওয়ান ওয়ার্ল্ড ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল, জিলিন ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল এবং ফ্রেশ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল। গণমাধ্যম thumb|right|চেক টেলিভিশন ভবন চেক সাংবাদিক ও গণমাধ্যমের এক বিশেষ মাত্রার স্বাধীনতা রয়েছে। নাৎসিবাদ, বর্ণবাদ বা চেক আইন উল্লঙ্ঘনের সমর্থনে লেখার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ রয়েছে। ২০২১ সালে রিপোর্টার্স উইদাউট বর্ডারস কর্তৃক বিশ্ব স্বাধীনতা সূচকে চেক গণমাধ্যমকে ৪০তম সর্বাধিক স্বাধীন গণমাধ্যম হিসেবে স্থান দেওয়া হয়েছিল। রেডিও ফ্রি ইউরোপ/রেডিও লিবার্টি এর সদর দপ্তর প্রাগে অবস্থিত। জাতীয় পাবলিক টেলিভিশন পরিষেবা হল চেক টেলিভিশন যা ২৪ ঘন্টাব্যাপী খবরের চ্যানেল শেটে ২৪ (ČT24) এবং খবরের ওয়েবসাইট সিটি২৪.সিজেড (ct24.cz) পরিচালনা করে। , চেক টেলিভিশন সবচেয়ে বেশি দেখা টেলিভিশন, যার পরের স্থানে রয়েছে বেসরকারী টেলিভিশন টিভি নোভা এবং প্রাইমা টিভি। যাইহোক, টিভি নোভায় প্রচারিত প্রধান সংবাদ প্রোগ্রাম এবং প্রাইম টাইম প্রোগ্রাম সবচেয়ে বেশি দেখা হয়। অন্যান্য পাবলিক পরিষেবাগুলির মধ্যে রয়েছে চেক রেডিও এবং চেক সংবাদসংস্থা। ২০২০-২০২১ সালে সর্বাধিক বিক্রিত দৈনিক জাতীয় সংবাদপত্রগুলো হল ব্লেস্ক (গড় দৈনিক পাঠক ৭,০৩,০০০), ম্লাদা ফ্রন্টা ডিএনইএস (গড় দৈনিক পাঠক ৪,৬১,০০০), প্রাভো (গড় দৈনিক পাঠক ১,৮২,০০০), লিডোভে নোভিনি (গড় দৈনিক পাঠক ১,৬৩,০০০) এবং হোসপোদারস্কে নোভিনি (গড় দৈনিক পাঠক ১,৬২,০০০)। অধিকাংশ চেক জনগণ (৮৭ শতাংশ) সংবাদ পড়ার ক্ষেত্রে অনলাইন মাধ্যম ব্যবহার করে। যার মধ্যে ২০২১ সালে সবচেয়ে বেশি ভ্রমণকৃত ওয়েবসাইট শেনজাম (Seznam.cz), আইডিএনইএস (iDNES.cz), নোভিংকি (Novinky.cz), আইপ্রাইমা (iPrima.cz) এবং সেজানাম জেডপ্রাভি (Zprávy.cz)। খাদ্যাভ্যাস thumb|মগভর্তি পলজেংস্কি প্রাজডোই; ১৮৪২ সাল থেকে প্রস্তুতকৃত পিলসেন ধরনের প্রথম ফ্যাকাসে ল্যাগার বিয়ার চেক রন্ধনপ্রণালীতে শুয়োরের মাংস, গরুর মাংস এবং মুরগির মাংসের খাবারের উপর জোর দেয়া হয়। রাজহাঁস, হাঁস, খরগোশ এবং ভেনিসন পরিবেশন করা হয়। মাছ সাধারণত কম দেখা যায়। তবে বড়দিনের মতো বিশেষ কিছু অনুষ্ঠানে তাজা ট্রাউট এবং কার্প মাছ পরিবেশন করা হয়। বিভিন্ন ধরনের স্থানীয় সসেজ, উর্স্ট, পেটিস, এবং ধূমায়িত ও কিউরিংকৃত মাংস প্রচলিত রয়েছে। চেক মিষ্টান্নের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের হুইপড ক্রিম, চকোলেট, ফলের পেস্ট্রি এবং টার্ট, ক্রেপস, ক্রেম ডেজার্ট এবং পনির, পোস্ত-বীজ-ভরা ও অন্যান্য ধরনের ঐতিহ্যবাহী কেক যেমন বুচি, কোলাশ এবং স্ট্রুডল। চেক বিয়ারের ইতিহাস এক সহস্রাব্দেরও বেশি সময় ধরে বিস্তৃত; প্রাচীনতম পরিচিত মদের কারখানা ৯৯৩ সালে বিদ্যমান ছিল। বর্তমানে চেক প্রজাতন্ত্রে মাথাপিছু বিয়ারের ব্যবহার বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি। পিলজেনার ধরনের বিয়ার (পিলস) এর উৎপত্তি হয়েছে পিলজেন অঞ্চলে, যেখানে বিশ্বের প্রথম সোনালি ল্যাগার পিলজেনার উরকেল এখনও উৎপাদিত হয়। বর্তমানে বিশ্বে উৎপাদিত বিয়ারের দুই-তৃতীয়াংশেরও বেশির অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে এটি। চেস্কে বুদেজোভিসে শহর একই পদ্ধতিতে তাদের বিয়ারকে নাম দিয়েছে, যা বুডোয়েজার বুডভার নামে পরিচিত। দক্ষিণ মোরাভিয়া অঞ্চল মধ্যযুগ থেকে ওয়াইন উৎপাদন করে আসছে। চেক প্রজাতন্ত্রের প্রায় ৯৪% দ্রাক্ষাক্ষেত্র মোরাভিয়। বিয়ার, স্লিভোভিজ এবং ওয়াইন ছাড়াও চেক প্রজাতন্ত্র দুই ধরনের মদ, ফার্নেট স্টক এবং বেচেরোভকা তৈরি করে। কোফোলা হচ্ছে একটি অ্যালকোহলমুক্ত গার্হস্থ্য কোলাজাতীয় কোমল পানীয় যা কোকা-কোলা এবং পেপসির প্রতিদ্বন্দ্বী। খেলাধুলা thumb|right|হকি খেলোয়াড় ইয়ারোমির ইয়াগর চেক প্রজাতন্ত্রের দুটি শীর্ষ খেলা ফুটবল এবং আইস হকি। সবচেয়ে বেশি দেখা ক্রীড়ানুষ্ঠান হচ্ছে অলিম্পিক টুর্নামেন্ট এবং আইস হকির বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপ। অন্যান্য সর্বাধিক জনপ্রিয় খেলাগুলির মধ্যে রয়েছে টেনিস, ভলিবল, ফ্লোরবল, গল্‌ফ, বল হকি, অ্যাথলেটিকস, বাস্কেটবল এবং স্কিইং। দেশটি গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে ১৫ টি এবং শীতকালীন অলিম্পিকে নয়টি স্বর্ণপদক জিতেছে। (অলিম্পিকের ইতিহাস দেখুন।) চেক আইস হকি দল ১৯৯৮ সালের শীতকালীন অলিম্পিকে স্বর্ণপদক জিতেছিল এবং বিশ্ব চ্যাম্পিয়নশিপে বারোটি স্বর্ণ পদক জিতেছিল (১৯৯৯ থেকে ২০০১ সাল পর্যন্ত একটানা তিনবার)। স্কোডা মোটরস্পোর্ট ১৯০১ সাল থেকে রেসিং প্রতিযোগিতার সাথে জড়িত এবং বিশ্বজুড়ে বেশ কয়েকটি যানবাহনের ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করেছে। এমটিএক্স অটোমোবাইল কোম্পানি পূর্বে ১৯৬৯ সাল থেকে রেসিং গাড়ি এবং ফর্মুলা রেসিং গাড়ি তৈরির সাথে জড়িত ছিল। হাইকিং একটি জনপ্রিয় খেলা। চেক ভাষায় 'টুরিস্ট' শব্দটির অর্থ 'তুরিস্তা', যার অর্থ 'ট্রেকার' বা 'হাইকার'। হাইকারদের জন্য, (১২০ বছরেরও বেশি পুরোনো ঐতিহ্যের কারণে) পথ চিহ্নিতের জন্য একটি চেক হাইকিং মার্কার্স সিস্টেম রয়েছে, যা বিশ্বব্যাপী সব দেশ কর্তৃক গৃহীত হয়েছে। প্রায় ৪০,০০০ কিলোমিটার দীর্ঘ চিহ্নিত করা ক্ষুদ্র এবং দীর্ঘ দূরত্বের ট্রেইলের একটি নেটওয়ার্ক রয়েছে যা পুরো দেশ এবং সমস্ত চেক পর্বতমালাব্যাপী বিস্তৃত। আরও দেখুন চেক প্রজাতন্ত্র সম্পর্কিত বিষয়াবলি চেক প্রজাতন্ত্রের রূপরেখা নোট তথ্যসূত্র উদ্ধৃতি সাধারণ উৎস আরো পড়ুন হকমান, যিরি (১৯৯৮)। Historical dictionary of the Czech State. scarecrow press. ব্রায়ান্ট, চাদ (২০২১)। Prague: Belonging and the Modern City Cambridge MA: Harvard University Press. বহিঃসংযোগ সরকারি ওয়েবসাইট রাষ্ট্রপতির ওয়েবসাইট সিনেট জনপ্রশাসন প্রবেশদ্বার চেক পর্যটন চেক প্রজাতন্ত্রের আনুষ্ঠানিক পর্যটন ওয়েবসাইট চেকিয়া. দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক''. সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি. বিষয়শ্রেণী:চেক প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:১৯৯৩-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল বিষয়শ্রেণী:ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ইউরোপ কাউন্সিলের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:থ্রি সিস ইনিশিয়েটিভের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:ওইসিডি সদস্য বিষয়শ্রেণী:মধ্য ইউরোপ বিষয়শ্রেণী:ইউরোপের রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:স্থলবেষ্টিত দেশ বিষয়শ্রেণী:জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র বিষয়শ্রেণী:প্রজাতন্ত্র বিষয়শ্রেণী:সার্বভৌম রাষ্ট্র
বাংলা ঔপন্যাসিক তালিকা
https://bn.wikipedia.org/wiki/বাংলা_ঔপন্যাসিক_তালিকা
বাংলা ঔপন্যাসিক তালিকা অ অতীন বন্দ্যোপাধ্যায় অচিন্ত্যকুমার সেনগুপ্ত অমর মিত্র অনিতা অগ্নিহোত্রী আ আখতারুজ্জামান ইলিয়াস আনিসুল হক আবু ইসহাক আবুল বাশার আশাপূর্ণা দেবী আশুতোষ মুখোপাধ্যায় আহমেদ ছফা ই ইমদাদুল হক মিলন ক কমলকুমার মজুমদার কালকূট কাজী ইমদাদুল হক কাজী নজরুল ইসলাম চ জ জয় গোস্বামী ত তসলিমা নাসরিন তিলোত্তমা মজুমদার দ দেবেশ রায় দিব্যেন্দু পালিত দুলেন্দ্র ভৌমিক দিলারা হাশেম ন নবারুণ ভট্টাচার্য নিমাই ভট্টাচার্য নীহাররঞ্জন গুপ্ত প প্রফুল্ল রায় প্রেমেন্দ্র মিত্র ব বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় বুদ্ধদেব গুহ বাণী বসু বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় বিভূতিভূষণ মুখোপাধ্যায় বলাইচাঁদ মুখোপাধ্যায় বিমল কর বিমল মিত্র ভ ভগীরথ মিশ্র ম মতি নন্দী মলয় রায়চৌধুরী মহাশ্বেতা দেবী মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় মামুন হুসাইন মীর মশাররফ হোসেন মৈত্রেয়ী দেবী র রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর রমাপদ চৌধুরী ল লীলা মজুমদার শ শওকত আলী শক্তিপদ রাজগুরু শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায় শংকর শহীদুল জহির শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় শ্যামল গঙ্গোপাধ্যায় স সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায় সত্যজিৎ রায় সন্দীপন চট্টোপাধ্যায় সমরেশ বসু সমরেশ মজুমদার সুচিত্রা ভট্টাচার্য সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় সুবিমল বসাক সুবিমল মিশ্র সুবোধ ঘোষ সেলিনা হোসেন সৈয়দ ওয়ালিউল্লাহ সৈয়দ মুস্তাফা সিরাজ সৈয়দ শামসুল হক হ হুমায়ুন আজাদ হুমায়ূন আহমেদ হেমেন্দ্র কুমার রায় আরো দেখুন বাঙালি কবিদের তালিকা বাঙালি সাহিত্যিকদের তালিকা (বর্ণানুক্রমিক) বাঙালি সাহিত্যিকদের তালিকা (কালানুক্রমিক) বিষয়শ্রেণী:বাংলা ভাষার উপন্যাস বিষয়শ্রেণী:পেশা অনুযায়ী বাংলাদেশী ব্যক্তিবর্গের তালিকা
এনরিকো ফের্মি
https://bn.wikipedia.org/wiki/এনরিকো_ফের্মি
এনরিকো ফার্মি (সেপ্টেম্বর ২৯, ১৯০১ - নভেম্বর ২৮, ১৯৫৪) একজন ইতালীয় পদার্থবিদ। তিনি ১৯৪২ খ্রিষ্টাব্দে সর্বপ্রথম পারমাণবিক বিভাজন ঘটাতে সক্ষম হন। এই গবেষণা পরবর্তীকালে পারমাণবিক বোমা, এবং পারমাণবিক চুল্লী (শক্তি উৎপাদনে ব্যবহৃত) তৈরির কাজের ভিত্তি হয়ে দাঁড়ায়। তিনি১৯৩৮ সালে রেডিওঅ্যাকটিভিটির উপর কাজের জন্য পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। তিনি ম্যানহাটন প্রকল্পে অংশগ্রহণ করেছিলেন। ফার্মি হলেন পৃথিবীর প্রথম নিউক্লিয়ার চুল্লী নির্মাতা। সে চুল্লীটির নাম ছিল শিকাগো পাইল- ১। তাকে বলা হয় নিউক্লিয়ার যুগের স্থপতি এবং একই সাথে নিউক্লিয়ার বোমারও স্থপতি। তিনি হলেন অল্প সংখ্যক পদার্থবিজ্ঞানীদের মধ্যে একজন যাঁরা একই সাথে তাত্ত্বিক ও পরীক্ষণ পদার্থবিজ্ঞানে কৃতিত্ব দেখিয়েছেন। ইউরেনিয়াম পরবর্তী মৌলসমূহে নিউট্রনের গোলাবর্ষণের মাধ্যমে প্রবর্তিত তেজস্ক্রিয়তার কাজের জন্য তিনি ১৯৩৮ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। প্রাথমিক জীবন থাম্ব|ফের্মি রোমের ভায়া গায়েটা-১ এ জন্মগ্রহণ করেছিলেন এনরিকো ফার্মি ইতালির রোমে ২৯ সেপ্টেম্বর, ১৯০১ খ্রিষ্টাব্দে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ছিলেন আলবার্তো ফার্মি এবং ইডা ডি গেট্টিস এর তৃতীয় সন্তান। বাবা আলবার্তো ফার্মি ছিলেন রেলওয়ে মন্ত্রণালয়ের বিভাগীয় প্রধান এবং মা ছিলেন একজন প্রাথমিক স্কুল শিক্ষিকা। তার বোন মারিয়া ছিলেন তার থেকে দুই বছরের বড় আর ভাই জুলিও (Giulio) ছিলেন এক বছরের বড়। ফার্মি এবং তার ভাই দুজনকেই দুধমার কাছে পাঠানো হয়েছিল গ্রামীণ এলাকায়। ফার্মি আড়াই বছর বয়সে তার পরিবারের কাছে ফিরে আসেন। শিক্ষাজীবন ফার্মি ১৯১৮ সালে পিসাতে অবস্থিত সুপিরিয়র নরমাল স্কুল থেকে গ্র্যাজুয়েশন সম্পন্ন করেন। ১৯২৩ সালে রকফেলার বৃত্তি পেয়ে তিনি জার্মানির গটিঞ্জেনে বিজ্ঞানী ম্যাক্স বর্নের সঙ্গে বেশ কয়েক বছর গবেষণাকর্মে নিযুক্ত ছিলেন। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:১৯০১-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৯৫৪-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:মাক্স প্লাংক পদক বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:ইতালীয় বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:মার্কিন অজ্ঞেয়বাদী বিষয়শ্রেণী:পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন পদার্থবিদ বিষয়শ্রেণী:মার্কিন নিউক্লীয় পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:পাকস্থলীর ক্যান্সারে মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির বিশিষ্ট সভ্য বিষয়শ্রেণী:রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য বিষয়শ্রেণী:ইতালীয় নোবেল বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:মার্কিন ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সদস্য বিষয়শ্রেণী:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য বিষয়শ্রেণী:নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:মাতেউচি পদক বিজয়ী
এর্ভিন শ্র্যোডিঙার
https://bn.wikipedia.org/wiki/এর্ভিন_শ্র্যোডিঙার
REDIRECT এরভিন শ্রোডিঙার
পল ডিরাক
https://bn.wikipedia.org/wiki/পল_ডিরাক
পুনর্নির্দেশ পল ডির‍্যাক
ভার্নার হাইজেনবার্গ
https://bn.wikipedia.org/wiki/ভার্নার_হাইজেনবার্গ
পদার্থবিজ্ঞানী তালিকা
https://bn.wikipedia.org/wiki/পদার্থবিজ্ঞানী_তালিকা
__NOTOC__ thumb|আলবার্ট আইন্সটাইনের সাথে জার্মানির কয়েকজন পদার্থবিজ্ঞানী অ অন্দের্শ ইয়োনাস অংস্ট্রের্ম অঁরি বেকেরেল আ আইজাক নিউটন আমাদিও আভোগাদ্রো আর্কিমিডিস আর্থার কম্পটন আর্নেস্ট রাদারফোর্ড আলবার্ট আইনস্টাইন আঁদ্রে মারি এম্পিয়ার আর্নেস্ট কার্ল অ্যাবে হাসান ইবনে আল-হাইসাম বা আলহাজেন আব্রাহাম আলিখানভ আর্যভট্ট আল-বাত্তানি আল-ফাজারি আল-মাসুদি আব্দুল কালাম উ উইলিয়াম আলিচ-যুক্তরাষ্ট্র(১৯০০-১৯৬৫) এ এনরিকো ফের্মি এর্ভিন শ্র্যোডিঙার এরিস্টটল ও ওয়ার্নার হাইজেনবার্গ ক ক্রিস্টিয়ান ডপলার চ চন্দ্রশেখর ভেঙ্কট রমন জ জন বার্ডীন জন স্টুয়ার্ট বেল জর্জ সায়মন ও'ম জঁ-বাপ্তিস্ত বিও জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল জগদীশচন্দ্র বসু ন নিলস বোর আইজ্যাক নিউটন প পল ডিরাক ফ ফাউলা ভ ভিলহেল্ম ভেবার ম মারি ক্যুরি র রিচার্ড ফাইনম্যান রেনে দেকার্ত রবার্ট এডলার রোনাল্ড আর্নেস্ট আইচিসন ল লুই দ্য ব্রয় (faithful to the correct French pron. of Luis de Broglie) লুট‌উইখ বোল্ট্‌স্‌মান লিওনার্ট অয়লার স স্টিফেন এল এডলার স্যামুয়েল কিং অ্যালিসন-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৯০০-১৯৬৫) ড ডেরেক অ্যাবট ডেভিড জে আলবার্ট ডেভিড বোম ডেভিড ব্রুস্টার আরও দেখুন রসায়নবিজ্ঞানীদের তালিকা বিষয়শ্রেণী:পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:পদার্থবিজ্ঞান সম্পর্কিত তালিকা
আলবার্ট আইনস্টাইন
https://bn.wikipedia.org/wiki/আলবার্ট_আইনস্টাইন
থাম্ব|১১ এপ্রিল, ১৯৪৩ আর্জেন্টিনার জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে লা প্লাতার রেডিওতে আলবার্ট আইনস্টাইনের একটি বক্তৃতার শুরুর অংশ আলবার্ট আইনস্টাইন ( ) (১৪ মার্চ ১৮৭৯ - ১৮ এপ্রিল ১৯৫৫) জার্মানিতে জন্মগ্রহণকারী একজন নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী। তিনি মূলত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব (আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের দুটি স্তম্ভের একটি) এবং ভর-শক্তি সমতুল্যতার সূত্র, ( যা "বিশ্বের সবচেয়ে বিখ্যাত সমীকরণ" হিসেবে খেতাব দেওয়া হয়েছে ) আবিষ্কারের জন্য বিখ্যাত। তিনি ১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। আইনস্টাইন জার্মান সাম্রাজ্যে জন্মগ্রহন করেছিলেন। তার পিতা একটি তড়িৎরাসায়নিক কারখানা পরিচালনা করতেন। তবে আইনস্টাইন ১৮৯৫ সালে সুইজারল্যান্ডে চলে আসেন এবং পরের বছর জার্মান নাগরিকত্ব ত্যাগ করেন। পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতে বিশেষায়িত হওয়ায় ১৯০০ সালে জ্যুরিখের ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল থেকে একাডেমিক শিক্ষা ডিপ্লোমা অর্জন করেন। পরের বছর তিনি সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব অর্জন করেছিলেন, যা তিনি আর ত্যাগ করেন নি। প্রাথমিকভাবে কাজ সন্ধানের জন্য সংগ্রাম করতে হলেও ১৯০২ থেকে ১৯০৯ সাল পর্যন্ত বার্নের সুইজারল্যান্ডীয় পেটেন্ট অফিসে পেটেন্ট পরীক্ষক হিসেবে কর্মরত ছিলেন। আইনস্টাইন পদার্থবিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রচুর গবেষণা করেছেন এবং নতুন উদ্ভাবন ও আবিষ্কারে তার অবদান অনেক। সবচেয়ে বিখ্যাত অবদান আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব (যা বলবিজ্ঞান ও তড়িচ্চৌম্বকত্বকে একীভূত করেছিল) এবং আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব (যা অসম গতির ক্ষেত্রে আপেক্ষিকতার তত্ত্ব প্রয়োগের মাধ্যমে একটি নতুন মহাকর্ষ তত্ত্ব প্রতিষ্ঠিত করেছিল)। তার অন্যান্য অবদানের মধ্যে রয়েছে আপেক্ষিকতাভিত্তিক বিশ্বতত্ত্ব, কৈশিক ক্রিয়া, ক্রান্তিক উপলবৎ বর্ণময়তা, পরিসংখ্যানিক বলবিজ্ঞান ও কোয়ান্টাম তত্ত্বের বিভিন্ন সমস্যার সমাধান যা তাকে অণুর ব্রাউনীয় গতি ব্যাখ্যা করার দিকে পরিচালিত করেছিল, আণবিক ক্রান্তিকের সম্ভ্যাব্যতা, এক-আণবিক গ্যাসের কোয়ান্টাম তত্ত্ব, নিম্ন বিকরণ ঘনত্বে আলোর তাপীয় ধর্ম (বিকিরণের একটি তত্ত্ব যা ফোটন তত্ত্বের ভিত্তি রচনা করেছিল), একীভূত ক্ষেত্র তত্ত্বের প্রথম ধারণা দিয়েছিলেন এবং পদার্থবিজ্ঞানের জ্যামিতিকীকরণ করেছিলেন। ১৯৩৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকাকালীন সময়ে এডলফ হিটলার জার্মানির ক্ষমতায় আসে। ইহুদী হওয়ার কারণে আইনস্টাইন আর জার্মানিতে ফিরে যান নি। আমেরিকাতেই তিনি থিতু হোন এবং ১৯৪০ সালে আমেরিকার নাগরিকত্ব পান। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর আগে আগে তিনি আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্টকে একটি চিঠি লেখেন। চিঠিতে তিনি জার্মান পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচী সম্পর্কে সতর্ক করেন এবং আমেরিকাকেও একই ধরনের গবেষণা শুরুর তাগিদ দেন। তার এই চিঠির মাধ্যমেই ম্যানহাটন প্রজেক্টের কাজ শুরু হয়। আইনস্টাইন মিত্রবাহিনীকে সমর্থন করলেও পারমাণবিক বোমা ব্যবহারের বিরুদ্ধে ছিলেন। পরে ব্রিটিশ দার্শনিক বারট্রান্ড রাসেল সঙ্গে মিলে পারমাণবিক অস্ত্রের বিপদের কথা তুলে ধরে রাসেল-আইনস্টাইন ইশতেহার রচনা করেন। ১৯৫৫ সালে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের ইনস্টিটিউট ফর এডভান্সড স্টাডির সঙ্গে যুক্ত ছিলেন। আইনস্টাইন ৩০০টিরও অধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র এবং ১৫০টির বেশি বিজ্ঞান-বহির্ভূত গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছেন। ১৯৯৯ সালে টাইম সাময়িকী আইনস্টাইনকে "শতাব্দীর সেরা ব্যক্তি" হিসেবে ঘোষণা করেছে। এছাড়া বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানীদের একটি ভোটের মাধ্যমে জানা গেছে, তাকে প্রায় সকলেই সর্বকালের সেরা পদার্থবিজ্ঞানী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন। দৈনন্দিন জীবনে মেধাবী এবং প্রখর বুদ্ধিসম্পন্ন কাউকে প্রায়শই "আইনস্টাইন" বলে সম্বোধন করা হয়। অর্থাৎ এটি প্রতিভা শব্দের সমার্থক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইউজিন উইগনার তাকে তাঁর সমসাময়িকদের সাথে তুলনা করতে গিয়ে লিখেছিলেন যে "জেনসি ভন নিউম্যানের চেয়ে আইনস্টাইনের বোধশক্তি আরও বেশি প্রখর ছিল। তার চিন্তাশক্তি নিউম্যানের চেয়ে ভেদ্য এবং বাস্তবিক ছিল।" জীবনী বাল্যকাল ও প্রাথমিক শিক্ষা alt=A young boy with short hair and a round face, wearing a white collar and large bow, with vest, coat, skirt and high boots. He is leaning against an ornate chair.|থাম্ব|১৮৮২ সালে ৩বছর বয়সে আইনস্টাইন আইনস্টাইন ১৮৭৯ সালের (ঊনবিংশ শতাব্দীর সবচেয়ে বিখ্যাত তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী জেমস ক্লার্ক ম্যাক্সওয়েল-এর মৃত্যুর বছর) ১৪ মার্চ উল্‌ম শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তার শৈশব কাটে মিউনিখে। আইনস্টাইনের বাবা-মা ছিলেন ধর্মনিরপেক্ষ মধ্যবিত্ত ইহুদি। বাবা হেরমান আইনস্টাইন মূলত পাখির পালকের বেড তৈরি ও বাজারজাত করতেন। পরবর্তীতে তাদের পরিবার মিউনিখে চলে এলে হেরমান তার ভাই জ্যাকবের সাথে একমুখী বিদ্যুৎ নির্ভর বৈদ্যুতিক যন্ত্র নির্মাণের একটি কারখানা স্থাপন করে মোটামুটি সফলতা পান। তার মা পলিন কখ পরিবারের অভ্যন্তরীণ সব দায়িত্ব পালন করতেন। তার এক বোন ছিল যার নাম মাজা। আইনস্টাইনের জন্মের দুই বছর পরই তার জন্ম হয়। ছোটবেলায় দুইটি জিনিস তার মনে অপার বিস্ময়ের জন্ম দিয়েছিল, প্রথমত পাঁচ বছর বয়সে একটি কম্পাস হাতে পান এবং তার ব্যবহার দেখে বিস্মিত হন। অদৃশ্য শক্তির কারণে কীভাবে কম্পাসের কাঁটা দিক পরিবর্তন করছে? তখন থেকে আজীবন অদৃশ্য শক্তির প্রতি তার বিশেষ আকর্ষণ ছিল। এরপর ১২ বছর বয়সে তিনি জ্যামিতির একটি বইয়ের সাথে পরিচিত হন। এই বইটি অধ্যয়ন করে এত মজা পেয়েছিলেন যে একে আজীবন "পবিত্র ছোট্ট জ্যামিতির বই" বলে সম্বোধন করেছেন। আসলে বইটি ছিল ইউক্লিডের এলিমেন্ট্‌স। আইনস্টাইন ৫ বছর বয়সে ক্যাথলিক প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ভর্তি হয়ে ৩বছর সেখানেই পড়াশোনা করেন। তার কথা বলার ক্ষমতা খুব একটা ছিল না, তথাপি স্কুলে বেশ ভালো ফলাফল করেছিলেন। এরপর ৮ বছর বয়সে তাকে লুইটপোল্ড জিমনেসিয়ামে (বর্তমানে আলবার্ট আইনস্টাইন জিমনেসিয়াম নামে পরিচিত) স্থানান্তরিত করা হয়, যেখানে তিনি উন্নত প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষা গ্রহণ করেছিলেন। সেখানে ৭বছর পড়াশোনা করা শেষে তিনি জার্মান সাম্রাজ্য ত্যাগ করেন। ১০ বছর বয়সে তার উপর মাক্স টালমুড নামক চিকিৎসাবিজ্ঞানের এক ছাত্রের বিশেষ প্রভাব পড়েছিল। তাদের বাসায় সে মাঝে মাঝেই নিমন্ত্রণ খেতে যেতো। এভাবে এক সময় সে আইনস্টাইনের অঘোষিত প্রশিক্ষকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়। টালমুড তাকে উচ্চতর গণিত ও দর্শন বিষয়ে শিক্ষা দিত। টালমুড তাকে অ্যারন বার্নস্টাইন লিখিত শিশু বিজ্ঞান সিরিজের (Naturwissenschaftliche Volksbucher, ১৮৬৭-৬৮) সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এই বইয়ে লেখক বিদ্যুতের সাথে ভ্রমণ তথা একটি টেলিগ্রাফ তারের ভিতর দিয়ে চলাচলের অভিজ্ঞতার কথা বলেন। আইনস্টাইন তখন নিজেকে প্রশ্ন করেন, এভাবে যদি আলোর সাথে ভ্রমণ করা যেত তাহলে কি ঘটত? এই প্রশ্নটি পরবর্তী ১০ বছর তার মনে ঘুরপাক খেতে থাকে। তিনি ভেবে দেখেন, আলোর সাথে একই গতিতে ভ্রমণ করলে আলোকে স্থির দেখা যাবে, ঠিক যেন জমাটবদ্ধ তরঙ্গ। আলো যেহেতু তরঙ্গ দিয়ে গঠিত সেহেতু তখন স্থির আলোক তরঙ্গের দেখা দিবে। কিন্তু স্থির আলোক তরঙ্গ কখনও দেখা যায়নি বা দেখা সম্ভব নয়। এখানেই একটি হেয়ালির জন্ম হয় যা তাকে ভাবিয়ে তোলে। ১৩ বছর বয়সে যখন তিনি দর্শন (এবং সঙ্গীতের) প্রতি আরও গুরুতর আগ্রহী হয়েছিলেন টালমুডই তাকে ইউক্লিডের এলিমেন্টস এবং ইমানুয়েল কান্টের ক্রিটিক অফ পিউর রিজন বইয়ের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিল। এরপরেই কান্ট তার প্রিয় দার্শনিক হয়ে ওঠেন। এলিমেন্ট্‌স পড়ে আইনস্টাইন অবরোহী কারণ অনুসন্ধান প্রক্রিয়া জানতে পারেন। স্কুল পর্যায়ে ইউক্লিডীয় জ্যামিতি আয়ত্ত করার পর তিনি ক্যালকুলাসের প্রতি মনোযোগী হন। দুই বছরের মাথায় তিনি দাবি করেন যে তিনি সমাকলন এবং অন্তরকলন ক্যালকুলাস আয়ত্ত করে ফেলেছেন। থাম্ব|বাম|200px|১৮৯৩ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন (১৪ বছর বয়স)। পরিবার ইতালিতে চলে যাবার আগে তোলা। ১২ বছর বয়সে আইনস্টাইন হঠাৎ বেশ ধার্মিক হয়ে উঠেছিলেন। স্রষ্টারগুণকীর্তণ করে বিভিন্ন গান ও পঙ্‌ক্তি আয়ত্ত করেছিলেন স্কুলে। কিন্তু বিজ্ঞান বিষয়ক বই পড়ার পর থেকে তার ধর্মীয় চেতনা কমে যেতে থাকে। কারণ বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের সাথে তার ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরোধ লেগে যাচ্ছিলো। আর বিজ্ঞানের তত্ত্বগুলো ছিল নিশ্চিতরূপে প্রমাণিত। এহেন অবস্থায় তৎকালীন ইহুদি নিয়ন্ত্রিত শিক্ষায়তনের কর্তৃপক্ষ তার উপর বিশেষ সন্তুষ্ট ছিল না। মায়ের আগ্রহে মাত্র ৬ বছর বয়সে আইনস্টাইন বেহালা হাতে নেন। বেহালা বাজানো খুব একটা পছন্দ করেন নি তিনি, তাই তখন তা ছেড়ে দেন। পরবর্তীতে অবশ্য তিনি মোৎসার্টের বেহালার সুরের প্রতি বিশেষ আগ্রহ দেখিয়েছেন। তিনি এ সময় বিভিন্ন যন্ত্রপাতি নিজে নিজে তৈরি করে অন্যদের দেখাতেন। এ সময় থেকেই গণিতের প্রতি তার বিশেষ আগ্রহ ও মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। আইনস্টাইনের বয়স যখন ১৫ তখন তার বাবা প্রতিনিয়ত ব্যবসায় ক্ষতির শিকার হতে থাকেন। ১৮৯৪ সালে হেরমান এবং জ্যাকবের কোম্পানি মিউনিখ শহরে বৈদ্যুতিক আলো সরবরাহের একটি চুক্তি হেরে যায় কারণ তাদের সরঞ্জামগুলিকে একমুখী বিদ্যুতের (ডিসি) মানদণ্ড থেকে আরও দক্ষ পরিবর্তী বিদ্যুতের (এসি) মানদণ্ডে রূপান্তর করার জন্য তাদের কাছে যথেষ্ট মূলধন ছিল না। এই ক্ষতির কারণে তারা মিউনিখের কারখানা বিক্রি করতে বাধ্য হন। অগত্যা হেরমান সপরিবারে ইতালির মিলানে পাড়ি জমান। সেখানে এক আত্মীয়ের সাথে কাজ শুরু করেন। মিলানের পর কয়েক মাস তারা পাভিয়া-তে থাকেন। তার বাবা পড়াশোনার জন্য তাকে মিউনিখে একটি বোর্ডিং হাউজে রেখে গিয়েছিলেন। তার বাবা চেয়েছিলেন ছেলে তড়িৎ প্রকৌশলী হবে, কিন্তু তিনি বিশুদ্ধ জ্ঞানের প্রতি আগ্রহ দেখিয়েছিলেন। সে সময়েই আইনস্টাইন জীবনের প্রথম বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র লিখেন যার নাম "চৌম্বক ক্ষেত্রে ইথারের অবস্থা সংক্রান্ত অনুসন্ধান" (The Investigation of the State of Aether in Magnetic Fields)। বোর্ডিং হাউজে একা একা তার জীবন দুঃসহ হয়ে উঠে। একে স্কুলের একঘেয়ে পড়াশোনা তার উপর ১৬ বছর বয়স হয়ে যাওয়ায় সামরিক দায়িত্ব পালনের চাপ তাকে হাপিয়ে তোলে। এছাড়া আইনস্টাইন বিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের সাথে সংঘর্ষে লিপ্ত হন এবং বিদ্যালয়ের নিয়ম ও শিক্ষাদানের পদ্ধতিতে বিরক্তি প্রকাশ করেন। প্রুশীয় ধরনের শিক্ষার প্রতি তিনি উদাসীন হয়ে যান। তার মতে সেই শিক্ষা সৃজনশীলতা ও মৌলিকত্ব নষ্ট করে দেওয়ার জন্য যথেষ্ট ছিল। এক শিক্ষক অবশ্য আইনস্টাইনকে বলেই বসেছিলেন যে তাকে দিয়ে মহৎ কিছু হবে না। পরিবার থেকে বিচ্ছিন্ন হওয়ার মাত্র ৬ মাস পরেই তাই মিউনিখ ছেড়ে পাভিয়াতে তার বাবা-মার কাছে চলে যান। হঠাৎ একদিন দরজায় আলবার্টকে দেখে তারা বেশ বিস্মিত হয়েছিলেন। তার উপর স্কুলের চাপের বিষয়টি বাবা-মা বুঝতে পারেন। ইতালিতে তাকে কোন স্কুলে ভর্তি করাননি তারা। তাই মুক্ত জীবন কাটাতে থাকেন আইনস্টাইন। তার যোগ্যতা খুব একটা আশাব্যঞ্জক বলে কারও মনে হয়নি। ডাক্তারের চিকিৎসাপত্রের অজুহাত দেখিয়ে তিনি স্কুল থেকে চলে এসেছিলেন। জুরিখের দিনগুলি ১৮৯৫ সালে ১৬ বছর বয়সে তিনি জুরিখের সুইজারল্যান্ডীয় ফেডারেল পলিটেকনিক স্কুল (১৯০৯ সালে একে বিবর্ধিত করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিণত করা হয়েছিল এবং ১৯১১ সালে নাম পরিবর্তন করে Eidgenössische Technische Hochschule রাখা হয়েছিল) থেকে প্রবেশিকা পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেন। ফরাসি ভাষা, রসায়ন এবং জীববিজ্ঞান বিষয়ে অকৃতকার্য হলেও পদার্থবিজ্ঞান এবং গণিতে তার অর্জিত গ্রেড অতুলনীয় ছিল। ১৮৯৫ সালে ইটিএইচ এর প্রধান শিক্ষকের উপদেশে তার মাধ্যমিক পড়াশোনা সম্পন্ন করতে তাকে সুইজারল্যান্ডের আরাইতে জোস্ট উইন্টেলার কর্তৃক পরিচালিত একটি বিশেষ ধরনের স্কুল আরগোভিয়ান ক্যান্টনাল স্কুলে পাঠানো হয়। সেখানে তিনি মূলত ম্যাক্সওয়েলের তাড়িতচৌম্বক তত্ত্ব নিয়ে পড়াশোনা করেছিলেন। প্রফেসর জোস্ট উইন্টেলারের পরিবারের সাথে থাকার সময় তিনি উইন্টেলারের মেয়ে সোফিয়া মেরি-জিন আমান্ডা উইন্টেলার (ডাকনাম মেরি) এর প্রেমে পড়ে যান। তার ছোট বোন মাজা উইন্টেলারের ছেলে পলকে বিয়ে করেছিলIbid. এবং তার ঘনিষ্ঠ বন্ধু মিশেল বেসো তাদের বড় মেয়ে আনাকে বিয়ে করেছিল। জুরিখের দিনগুলি তার খুব সুখে কেটেছিল। ১৮৯৬ সালের জানুয়ারিতে তার বাবার অনুমোদন সহকারে আইনস্টাইন সামরিক পরিষেবা এড়ানোর জন্য জার্মান কিংস্টম অফ উরটেমবার্গের নাগরিকত্ব ত্যাগ করেছিলেন। এরপর প্রায় ৫ বছর তিনি কোন দেশেরই নাগরিক ছিলেন না। ১৯০১ সালের ২১ ফেব্রুয়ারি সুইজার‌ল্যান্ডের নাগরিকত্ব লাভ করেন যা তিনি কখনই ত্যাগ করেননি। ডান|থাম্ব|200x200পিক্সেল|আরাউতে উইন্টেলারদের বাড়ি। যেখানে থেকে আইনস্টাইন স্কুল শিক্ষা শেষ করেন। ১৮৯৬ সালের সেপ্টেম্বরে তিনি ১-৬ স্কেলের মধ্যে পদার্থবিজ্ঞান এবং গাণিতিক বিষয়ে শীর্ষ গ্রেড ৬ সহ বেশিরভাগ বিষয়েই ভাল গ্রেড সহ সুইজারল্যান্ডীয় মতুরা (মাধ্যমিক পরীক্ষা) পাস করেন। ১৭ বছর বয়সে তিনি জুরিখ পলিটেকনিক স্কুলের চার বছরব্যাপী গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষকতা ডিপ্লোমায় ভর্তি হন। মেরি উইন্টেলার শিক্ষকতার জন্য সুইজারল্যান্ডের অলসবার্গে চলে যান। জুরিখে তিনি অনেক বন্ধুর সাথে পরিচিত হন যাদের সাথে তার ভাল সময়ে কেটেছে। যেমন গণিতজ্ঞ মার্সেল গ্রসম্যান এবং বেসো যার সাথে তিনি স্থান-কাল নিয়ে নিয়মিত আলোচনা করতেন। সেখানেই তার সাথে মিলেভা মেরিকের দেখা হয়। মেরিক ছিল তার পদার্থবিজ্ঞানের সহপাঠী। প্রকৃতপক্ষে মিলেভা ছিল বিশ্ববিদ্যালয়ের গণিত ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের ছয় শিক্ষার্থীর মধ্যে একমাত্র ছাত্রী। পরের কয়েক বছরে আইনস্টাইন এবং মেরিকের বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে পরিণত হয় এবং তারা উভয়েরই আগ্রহের বিষয় পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে বিতর্ক করে এবং বই পড়ে অগণিত সময় একে অপরের সাথে কাটিয়েছিল। আইনস্টাইন মেরিককে চিঠি পাঠিয়ে লিখেছিলেন যে তিনি তাঁর সাথে পড়াশোনা করতে পছন্দ করেন। ১৯০০ সালে আইনস্টাইন গণিত এবং পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন। বহু বছরের প্রত্যক্ষদর্শী প্রমাণ এবং বেশ কয়েকটি চিঠি রয়েছে যা ইঙ্গিত করে যে মেরিক সম্ভবত ১৯০৫ সালে তার প্রবন্ধ Annus Mirabilis এর প্রকাশে সহযোগিতা করেছিলেন এবং এর কিছু ধারণা তারা একসাথে বিকশিত করেছিলেন। যদিও কিছু ঐতিহাসিক পদার্থবিদ, যারা এই বিষয়টি নিয়ে গবেষণা করেছেন তারা এই ব্যাপারে সহমত নয় যে মেরিকের এই ব্যাপারে কোনো উল্লেখযোগ্য অবদান ছিল। বিবাহ এবং দাম্পত্য জীবন থাম্ব|আলবার্ট এবং মিলেভা আইনস্টাইন, ১৯১২ আইনস্টাইন এবং মিলেভার বন্ধুত্ব প্রেমের সম্পর্কে গড়ায় এবং এই মিলেভাকেই তিনি পরবর্তীকালে বিয়ে করেন। তাদের সম্পর্কটি শুধুমাত্র আবেগকেন্দ্রিক ছিলনা, তাতে যথেষ্ট পরিমাণ বুদ্ধিবৃত্তিক অংশীদারত্বের উপাদান মিশে ছিল।। তাই পরবর্তীকালে তিনি মিলেভা সম্বন্ধে বলেছিলেন, "মিলেভা এমন এক সৃষ্টি যে আমার সমান এবং আমার মতই শক্তিশালী ও স্বাধীন"। তাদের ঘরে তিন সন্তানের জন্ম হয়। আইনস্টাইনের মা অবশ্য চেহারা বেশি ভাল না থাকা, অ-ইহুদি এবং বয়স্ক হওয়ার কারণে মিলেভাকে প্রথমে পছন্দ করেননি। ১৯৮৭ সালে আইনস্টাইন এবং মেরিকের সম্পর্কের প্রথম দিকে আদানপ্রদানকৃত চিঠিপত্রগুলি আবিষ্কৃত হয় যা তাদের একটি কন্যা সন্তানের তথ্য প্রকাশ করে। মেয়েটির নাম ছিল লিসেল এবং তার জন্ম হয়েছিল ১৯০২ সালে যখন মেরিক তার বাবা মায়ের সাথে নোভি সাদে ছিল। মেরিক শিশুটিকে ছাড়াই সুইজারল্যান্ডে ফিরে আসেন, যার আসল নাম এবং পরিণতি অজানা। ১৯০৩ সালের সেপ্টেম্বরে মেরিককে লেখা আইনস্টাইনের চিঠির বিষয়বস্তু থেকে বোঝা যায় যে মেয়েটি হয় কাউকে দত্তক দেওয়া হয়েছিল বা শৈশবকালে আরক্ত জ্বরে মারা গিয়েছিল। এ সময় মিশেল বেসো তাকে আর্নস্ট মাখ-এর লেখার সাথে পরিচয় করিয়ে দেন। এর পর পরই তার গবেষণাপত্র Annalen der Physik প্রকাশিত হয় যার বিষয় ছিল নলের মধ্য দিয়ে কৈশিক বল। alt=Einstein, looking relaxed and holding a pipe, stands next to a smiling, well-dressed Elsa who is wearing a fancy hat and fur wrap. She is looking at him.|থাম্ব|আইনস্টাইন তার দ্বিতীয় স্ত্রী এলসার সাথে, ১৯২১ আইনস্টাইন এবং মেরিক ১৯০৩ সালের জানুয়ারিতে বিয়ে করেছিলেন। ১৯০৪ সালের মে মাসে সুইজারল্যান্ডের বার্নে তাদের ছেলে হান্স অ্যালবার্ট আইনস্টাইন জন্ম নেয়। এবং তাদের ছেলে এডুয়ার্ড ১৯১০ সালের জুলাই মাসে জুরিখে জন্মগ্রহণ করেছিল। তারা সকলে ১৯১৪ সালে তারা বার্লিনে চলে আসলেও মেরিক কিছুদিন পরেই ছেলেদের নিয়ে জুরিখে ফিরে আসে। এর কারণ তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক থাকা সত্ত্বেও আইনস্টাইন তার চাচাতো বোন এলসার প্রেমে পরে গিয়েছিল। পাঁচ বছর আলাদা থাকার পরে ১৯১৯ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি তাদের বিবাহবিচ্ছেদ ঘটে। ২০ বছর বয়সে এডুয়ার্ডের শরীর খারাপ হয় এবং তার সিজোফ্রিনিয়া ধরা পরে। তার মা তার যত্ন নিতো এবং তাকে প্রায়ই আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হতো। তার মায়ের মৃত্যুর পর তাকে স্থায়ীভাবে আশ্রয়কেন্দ্রে পাঠানো হয়। ২০১৫ সালে আইনস্টাইন তার প্রথম প্রেম মেরি উইন্টেলারকে লেখা কিছু চিঠি প্রকাশিত হয়। চিঠিগুলোতে তাঁর বিবাহ এবং তার প্রতি আইনস্টাইনের দৃঢ় অনুভূতি সম্পর্কে লিখেছিলেন। ১৯১০ সালে যখন তার স্ত্রী দ্বিতীয়বার গর্ভবতি হন তখন আইনস্টাইন লিখেছিলেন, "আমি তোমার কথা প্রতি মুহুর্তে চিন্তা করি এবং একজন মানুষ যতটা অসুখী হতে পারে আমি ঠিক ততোটাই অসুখী।" তিনি মেরির প্রতি তার ভালবাসার সম্পর্কে "বিপথগামী ভালবাসা" এবং "হারিয়ে ফেলা জীবন" বলে উল্লেখ করেছেন। ১৯১২ সাল থেকে লম্বা সম্পর্কের পর ১৯১৯ সালে আইনস্টাইন এলসা লভেন্থালকে বিয়ে করেন। তিনি জন্মের দিক থেকে আইনস্টাইনের প্রথম এবং পৈতৃকভাবেভাবে দ্বিতীয় চাচাতো বোন ছিলেন। ১৯৩৩ সালে তারা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে চলে আসেন। ১৯৩৩ সালে এলসার হার্ট ও কিডনির সমস্যা ধরা পড়ে এবং ১৯৩৬ সালের ডিসেম্বরে তিনি মারা যান। ১৯২৩ সালে আইনস্টাইন ঘনিষ্ঠ বন্ধু হ্যান্স মুহসামের ভাগ্নী বেটি নিউম্যান নামে এক সচিবের প্রেমে পড়েন। ২০০৬ সালে জেরুজালেমের হিব্রু বিশ্ববিদ্যালয় থেকে প্রকাশিত কিছু চিঠিতে আইনস্টাইন ছয়জন নারীর কথা বর্ণনা করেছেন যাদের সাথে তিনি এলসার সাথে বিবাহিত থাকা অবস্থায় সময় কাটিয়েছেন এবং তাদের থেকে উপহার গ্রহণ করেছেন। এদের মধ্যে এস্টেলা কাটজেনেলেনবোজেন (ধনী ফুল ব্যবসায়ী), টনি মেন্ডেল (একজন ধনী ইহুদি বিধবা) এবং এথেল মিশানোভস্কিও (বার্লিনের একজন সমাজসেবী) ছিলেন। দ্বিতীয় স্ত্রী এলসার মৃত্যুর পরে আইনস্টাইন মার্গারিটা কোনেনকোভার সাথে সংক্ষিপ্ত সম্পর্কের মধ্যে ছিলেন। কোনেনকোভা ছিলেন একজন রাশিয়ান গুপ্তচর, যিনি বিখ্যাত রাশিয়ান ভাস্কর সের্গেই কোনেনকভের (যিনি প্রিন্সটনের ইনস্টিটিউট ফর অ্যাডভান্সড স্টাডিতে আইনস্টাইনের ব্রোঞ্জ মূর্তিটি তৈরি করেছিলেন) সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ ছিলেন। বন্ধুবান্ধব আইনস্টাইনের সুপরিচিত বন্ধুদের মধ্যে ছিলেন মিশেল বেসো, পল এরেনফেস্ট, মার্সেল গ্রসম্যান, জ্যানোস প্ল্যাশ, ড্যানিয়েল পসিন, মরিস সলোভাইন এবং স্টিফেন স্যামুয়েল ওয়াইজ। পেটেন্ট অফিস সংযোগ=https://en.wikipedia.org/wiki/File:Einstein_patentoffice.jpg|alt=Head and shoulders shot of a young, moustached man with dark, curly hair wearing a plaid suit and vest, striped shirt, and a dark tie.|বাম|থাম্ব|১৯০৪ সালে আলবার্ট আইনস্টাইন (বয়স ২৫) স্নাতক হবার পর আইনস্টাইন শিক্ষকতার কোন চাকরি খুঁজে পাননি। প্রায় ২ বছর চাকরির জন্য ঘোরাঘুরি করেন। তিনি ১৯০১ সালের ফেব্রুয়ারিতে সুইজারল্যান্ডের নাগরিকত্ব অর্জন করেছিলেন, তবে চিকিৎসা সংক্রান্ত কারণে তাকে কোথাও নিয়োগ দেওয়া হয়নি। কিন্তু ২ বছর ঘোরাঘুরির পর তার প্রাক্তন এক সহপাঠীর বাবা তাকে বার্নে ফেডারেল অফিস ফর ইন্টেলেকচুয়াল প্রোপার্টি নামক একটি পেটেন্ট অফিসে চাকরির ব্যবস্থা করে দেন। তার চাকরি ছিল সহকারী পরীক্ষকের। নুড়ি বাছাইকরণ যন্ত্র, বৈদ্যুতিন টাইপরাইটারসহ আগত বিভিন্ন ধরনের পেটেন্ট মুল্যায়ন করাই আইনস্টাইনের কাজ ছিল। ১৯০৩ সালে সুইস পেটেন্ট অফিসে তার এই চাকরি স্থায়ী হয়ে যায়। অবশ্য যন্ত্রের কলা-কৌশল সম্পর্কে পূর্ণ দক্ষতা অর্জন না করা পর্যন্ত তার পদোন্নতি হবেনা বলে জানিয়ে দেয়া হয়েছিল। থাম্ব|বাম|alt=Three young men in suits with high white collars and bow ties, sitting.|দ্য অলিম্পিয়া একাডেমির প্রতিষ্ঠাতা: কনরাড হাবিট, মরিস সলোভাইন এবং আইনস্টাইন আইনস্টাইনের কলেজ সহপাঠী মিশেল বেসোও এই পেটেন্ট অফিসে কাজ করতো। তারা দুজন অন্য বন্ধুদের সাথে বার্নের এক জায়াগায় নিয়মিত মিলিত হতেন। তাদের মিলিত হবার উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞান এবং দর্শন বিষয়ে আলোচনা করা, এবং এভাবেই একটি ক্লাবের জন্ম হয়। কৌতুকভরে তারা এই ক্লাবের নাম দিয়েছিলেন "দ্য অলিম্পিয়া একাডেমি"। এদের সাথে প্রায়ই মিলেভা যুক্ত হতো, তবে সে শুধু মনোযোগ দিয়ে শুনতোই কিন্তু অংশ নিতো না। সেখানে তারা সবচেয়ে বেশি যাদের লেখা পড়তেন তারা হলেন, অঁরি পয়েনকেয়ার, আর্নস্ট মাখ এবং ডেভিড হিউম। এরাই মূলত আইনস্টাইনের বৈজ্ঞানিক ও দার্শনিক চিন্তাধারায় সবচেয়ে বেশি প্রভাব ফেলেছিল। সাধারণ বিশেষজ্ঞ এবং ইতিহাসবিদরা মনে করেন পেটেন্ট অফিসের দিনগুলিতে আইনস্টাইনের মেধার অপচয় হয়েছে। কারণ পদার্থবিজ্ঞান বিষয়ে তার আগ্রহের সাথে এই চাকরির কোন সংযোগ ছিলনা এবং ‌এ সময়ে তিনি অনেক এগিয়ে যেতে পারতেন।E.g. কিন্তু বিজ্ঞান ইতিহাসবিদ পিটার গ্যালিসন এ ব্যাপারে দ্বিমত পোষণ করেছেন। তার মতে, সেখানে অবস্থানকালীন কাজকর্মের সাথে আইনস্টাইনের পরবর্তী জীবনের আগ্রহের বিষয়গুলোর যোগসূত্র রয়েছে। যেমন, পেটেন্ট অফিসে কর্মরত থাকাকালীন সময়ে তিনি বৈদ্যুতিক সংকেতের সঞ্চালন এবং সময়ের বৈদ্যুতিক-যান্ত্রিক সামঞ্জস্য বিধান বিষয়ে কিছু গবেষণা করেছিলেন। তখন সঙ্কালিক সময় বিষয়ক চিন্তাধারায় দুটি প্রধান কৌশলগত সমস্যা ছিল। এই সমস্যাগুলো নিয়ে চিন্তা করতে গিয়েই সে সময়ে তিনি আলোর প্রকৃতি এবং স্থান ও কালের মধ্যে মৌলিক যোগসূত্র বুঝতে পেরেছিলেন। প্রথম বৈজ্ঞানিক পেটেন্ট ১৯০০ সালে Annalen der Physik জার্নালে আন্তঃআণবিক শক্তির উপর আইনস্টাইনের প্রথম গবেষণাপত্র "Folgerungen aus den Capillaritätserscheinungen" প্রকাশিত হয়। ১৯০৫ সালের ৩০ এপ্রিল আইনস্টাইন পরীক্ষামূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলফ্রেড ক্লাইনারের তত্ত্বাবধানে তার থিসিস সম্পন্ন করেন। ফলস্বরূপ "A New Determination of Molecular Dimensions" প্রবন্ধের জন্য আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে তার পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছিলেন। ১৯০৫ সালে পেটেন্ট অফিসে কর্মরত থাকাকলিন সময়ে আইনস্টাইন Annalen der Physik নামক জার্মান বিজ্ঞান সাময়িকীতে যুগান্তকারী চারটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। তখনও তিনি পেটেন্ট অফিসে কর্মরত ছিলেন। জার্মানির নেতৃস্থানীয় বিজ্ঞান সাময়িকীতে প্রকাশিত এই গবেষণাপত্রগুলোকে ইতিহাসে অ্যানাস মিরাবিলিস গবেষণাপত্রসমূহ নামে স্মরণীয় করে রাখা হয়েছে। গবেষণাপত্র চারটির বিষয় ছিল: আলোক তড়িৎ ক্রিয়া প্রতিপাদন। ব্রাউনীয় গতি - আণবিক তত্ত্বের সমর্থন। আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব আবিষ্কার। ভর-শক্তি সমতা - বিখ্যাত সূত্র প্রতিপাদন। চারটি গবেষণাপত্র বিজ্ঞানের ইতিহাসে বিস্ময়কর ঘটনা হিসেবে স্বীকৃত এবং এগুলোর কারণেই ১৯০৫ সালকে আইনস্টাইনের জীবনের "চমৎকার বছর" হিসেবে উল্লেখ করা হয়। অবশ্য সে সময় তার গবেষণাপত্রের অনেকগুলো তত্ত্বই প্রমাণিত হয়নি এবং অনেক বিজ্ঞানী কয়েকটি আবিষ্কারকে ভ্রান্ত বলে উড়িয়ে দেন। যেমন আলোর কোয়ান্টা বিষয়ে তার মতবাদ অনেক বছর ধরে বিতর্কিত ছিল। ২৬ বছর বয়সে আইনস্টাইন জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার উপদেষ্টা ছিলেন পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানের অধ্যাপক আলফ্রেড ক্লাইনার। তার পিএইচডি অভিসন্দর্ভের নাম ছিল, "আ নিউ ডিটারমিনেশন অফ মলিক্যুলার ডাইমেনশন্‌স" তথা আণবিক মাত্রা বিষয়ে একটি নতুন নিরুপণ। পদোন্নতি ও অধ্যাপনা শুরু ১৯০৬ সালে পেটেন্ট অফিস আইনস্টাইনকে টেকনিক্যাল পরীক্ষকের পদে উন্নীত করে। কিন্তু তিনি তখনও পড়াশোনার কাজ চালিয়ে যেতে থাকেন। ১৯০৮ সালে বার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রভাষক হিসেবে যোগ দেন। পরের বছর, তিনি জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ে তড়িচ্চুম্বকত্ব এবং আপেক্ষিকতা নীতির উপর একটি বক্তৃতা দেওয়ার পরে আলফ্রেড ক্লাইনার তাকে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে সদ্য নির্মিত প্রোফেসর পদের জন্য অনুষদে সুপারিশ করেছিলেন। আইনস্টাইন ১৯০৯ সালে জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন।। অবশ্য ১৯১১ সালের এপ্রিলে চার্লস ইউনিভার্সিটি অফ প্রাগে পূর্ণ অধ্যাপকের পদ গ্রহণ করেন। তখন অস্ট্রো-হাঙ্গেরিয়ান সাম্রাজ্যের অধিনে অস্ট্রিয়ার নাগরিকত্ব গ্রহণ করেন। প্রাগে অবস্থানকালে তিনি ১১ টি বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র লিখেছিলেন, এর মধ্যে পাঁচটি বিকিরণ গণিত এবং কঠিন বস্তুর কোয়ান্টাম তত্ত্বের উপর। ১৯১২ সালের জুলাইয়ে তিনি জুরিখে তার মাতৃশিক্ষায়নে ফিরে আসেন। ১৯১২ সাল থেকে ১৯১৪ অবধি তিনি ইটিএইচ জুরিখের তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানের একজন অধ্যাপক ছিলেন, যেখানে তিনি বিশ্লেষণাত্মক বলবিদ্যা এবং তাপগতিবিদ্যা বিষয়ে পড়িয়েছিলেন। তিনি কন্টিনিউয়াম বলবিদ্যা, তাপের আণবিক তত্ত্ব অধ্যয়ন করেছিলেন এবং মহাকর্ষের একটি সমস্যা নিয়ে, যার গণিতবিদ এবং তার বন্ধু মার্সেল গ্রোসমানের সাথে কাজ করেছিলেন। ১৯১০ সালে তিনি ক্রান্তীয় অনচ্ছতা বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র লেখেন। এতে পরিবেশে একক অণু কর্তৃক বিচ্ছুরিত আলোর ক্রমপুঞ্জিত প্রভাব বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়। এর মাধ্যমেই আকাশ কেন নীল দেখায় তার রহস্য উন্মোচিত হয়। ১৯০৯ সালে আরও দুটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। প্রথমটিতে তিনি বলেন, ম্যাক্স প্লাংকের শক্তি-কোয়ান্টার অবশ্যই সুনির্দিষ্ট ভরবেগ থাকতে হবে এবং তা একটি স্বাধীন বিন্দুবৎ কণার মতো আচরণ করবে। এই গবেষণাপত্রেই ফোটন ধারণাটির জন্ম হয়। অবশ্য ফোটন শব্দটি ১৯২৬ সালে গিলবার্ট এন লুইস প্রথম ব্যবহার করেছিলেন। তবে আইনস্টাইনের গবেষণাতেই ফোটনের প্রকৃত অর্থ বোঝা যায় এবং এর ফলে কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞানে তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা বিষয়ক ধারণার উৎপত্তি ঘটে। তার অন্য গবেষণাপত্রের নাম ছিল "Über die Entwicklung unserer Anschauungen über das Wesen und die Konstitution der Strahlung" (বিকিরণের গাঠনিক রূপ এবং আবশ্যকীয়তা সম্বন্ধে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গির উন্নয়ন) যা আলোর কোয়ান্টায়ন বিষয়ে রচিত হয়। আলোর উপর মহাকর্ষের প্রভাব বিশেষত মহাকর্ষীয় লাল সরণ এবং আলোর মহাকর্ষীয় বিচ্যুতি বিষয়ে একটি গবেষণাপত্র লেখেন। এর মাধ্যমে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা সূর্যগ্রহনের (Solar eclipse) সময় আলোর বিচ্যুতির কারণ খুঁজে পান। (also in Collected Papers Vol. 3, document 23) এ সময় জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী Erwin Freundlich বিজ্ঞানীদের প্রতি আইনস্টাইনের চ্যালেঞ্জগুলো প্রচার করতে শুরু করেন। ডান|থাম্ব|১৯১৯ সালের ২৯ মে প্রিন্সিপ (আফ্রিকা) এবং সোব্রালে (ব্রাজিল) সূর্যগ্রহণ পর্যবেক্ষণের পর ৬ নভেম্বর ১৯১৯ লন্ডনে রয়েল সোসাইটি এবং রয়েল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল সোসাইটির একটি যৌথ সভায় এর ফলাফলগুলি প্রকাশের পর নিউ ইয়র্ক টাইমস "আইনস্টাইন তত্ত্ব" (মহাকর্ষ বল দ্বারা আলোর বেঁকে যাওয়া) এর নিশ্চয়তার কথা জানিয়েছিল। (সম্পূর্ণ লেখা ) ১৯১৩ সালের ৩ জুলাই তিনি বার্লিনের প্রুশিয়ান একাডেমি অফ সায়েন্সেস-এ সদস্যপদের জন্য নির্বাচিত হন। পরের সপ্তাহে ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এবং ভালটার নের্ন্‌স্ট তাকে একাডেমিতে যোগদানে প্ররোচিত করার জন্য জুরিখে যান, পাশাপাশি কাইজার ভিলহেল্ম ইনস্টিটিউট ফর ফিজিক্সে পরিচালক পদও প্রদান করেছিলেন, যা শীঘ্রই প্রতিষ্ঠিত হওয়ার কথা ছিল। একাডেমির সদস্যপদের সুবিধা হিসেবে বেতন এবং বার্লিনের হাম্বল্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকতা ছাড়াই অধ্যাপকত্ব অন্তর্ভুক্ত ছিল। ২৪ জুলাই আনুষ্ঠানিকভাবে একাডেমিতে নির্বাচিত হওয়ার পরের বছরই তিনি বার্লিনে চলে আসেন। তার বার্লিনে চলে যাওয়ার সিদ্ধান্তটির পিছনে তার চাচাত বোন এলসার কাছাকাছি থাকার প্রত্যাশার দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল, কারণ এলসার সাথে তার একটি প্রেমের সম্পর্ক শুরু হয়েছিল। তিনি ১৯১৪ সালের ১ এপ্রিল একাডেমী এবং বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদান করলেও ওই একই বছর প্রথম বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার কারণে কাইজার ভিলহেল্ম ইন্সটিটিউট ফর ফিজিক্সের পরিকল্পনা স্থগিত করা হয়েছিল। ইনস্টিটিউটটি ১৯১৭ সালের ১ অক্টোবর প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং এর পরিচালক ছিলেন আইনস্টাইন। ১৯১৬ সালে আইনস্টাইন জার্মান ফিজিক্যাল সোসাইটির সভাপতি (১৯১৬-১৯১৮) নির্বাচিত হন । বাম|থাম্ব|১৯২১ সালে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পরে আইনস্টাইনের সরকারি প্রতিকৃতি আইনস্টাইন ১৯১১ সালে তার সাধারণ আপেক্ষিকতার নতুন তত্ত্ব ব্যবহার করে তার গণনা অনুযায়ী অন্য একটি নক্ষত্রের আলো সূর্যের মাধ্যাকর্ষণের কারণে বেঁকে যাওয়া উচিত। ১৯১৯ সালের ১৯ মে এর সূর্যগ্রহণের সময় এই গণনাটি স্যার আর্থার এডিংটন নিশ্চিত করেছিলেন। এই পর্যবেক্ষণগুলি আন্তর্জাতিক মিডিয়ায় প্রকাশিত হয়েছিল, যা আইনস্টাইনকে বিশ্বখ্যাত করে তুলেছিল। ১৯১৯ সালের নভেম্বরে শীর্ষস্থানীয় ব্রিটিশ সংবাদপত্র দ্য টাইমস একটি ব্যানার শিরোনাম ছাপায় যেটিতে লেখা ছিল: "Revolution in Science – New Theory of the Universe – Newtonian Ideas Overthrown" (বিজ্ঞানের বিপ্লব - মহাবিশ্বের নতুন তত্ত্ব - নিউটনিয় ধারণা নিপাতিত)। ১৯২০ সালে তিনি রয়্যাল নেদারল্যান্ড একাডেমী অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেস এর একজন বিদেশী সদস্য হন। ১৯২২ সালে তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানে তার অবদান এবং বিশেষত আলোক তড়িৎ ক্রিয়া সম্পর্কিত সুত্র আবিষ্কারের জন্য ১৯২১ সালের পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। যদিও আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্বটি তখনও কিছুটা বিতর্কিত হিসাবে বিবেচিত হয়েছিল। এমনকি আলোক তড়িৎ সম্পর্কিত উদ্ধৃত গবেষণাকে ব্যাখ্যা হিসেবে বিবেচনা না করে শুধুমাত্র একটি সুত্রের আবিষ্কার হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছিল। এর কারণ ১৯২৪ সালে সত্যেন্দ্রনাথ বসু কর্তৃক প্ল্যাঙ্ক স্পেকট্রাম আবিষ্কারের পূর্বে ফোটনের ধারনাকে উদ্ভট মনে করা হতো এবং এর সর্বজন স্বীকৃতি ছিল না। আইনস্টাইন ১৯২১ সালে রয়্যাল সোসাইটির বিদেশি সদস্য (ForMemRS) নির্বাচিত হন। এছাড়া তিনি ১৯২৫ সালে রয়েল সোসাইটি থেকে কপলি পদকও পেয়েছিলেন। ১৯২১–১৯২২: বিদেশ ভ্রমণ আইনস্টাইন ১৯২১ সালের ২ এপ্রিল প্রথমবারের মতো নিউইয়র্ক শহর সফর করেছিলেন। সেখানের মেয়র জন ফ্রান্সিস হিলান তাকে সরকারীভাবে স্বাগত জানান এবং তারপরে তিন সপ্তাহ বিভিন্ন বক্তৃতা এবং সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে অতিথি হন। তিনি কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে বিভিন্ন বক্তৃতা দেওয়ার জন্য গিয়েছিলেন। এছাড়া ওয়াশিংটনে তিনি ন্যাশনাল একাডেমি অফ সায়েন্সের প্রতিনিধিদের সাথে হোয়াইট হাউসে গিয়েছিলেন। ইউরোপে ফিরে তিনি লন্ডনে ব্রিটিশ রাজনীতিবিদ এবং দার্শনিক ভিসকাউন্ট হালদেনের অতিথি হন। সেখানে তিনি বেশ কয়েকজন নামী বিজ্ঞানী, বুদ্ধিজীবী ও রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের সাথে সাক্ষাত করেছিলেন এবং কিংস কলেজ লন্ডনে একটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন। ১৯২১ সালের জুলাই মাসে তিনি "মাই ফার্স্ট ইম্প্রেশন অফ দ্য ইউএসএ" নামের একটি প্রবন্ধ প্রকাশ করেন যেখানে তিনি সংক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্র এবং মার্কিনীদের বৈশিষ্ট বর্ণনা করার চেষ্টা করেন। আইনস্টাইন তার কিছু পর্যবেক্ষণে স্পষ্টভাবে অবাক হয়েছিলেন: " একজন দর্শনার্থীর কাছে আকর্ষণের বিষয় হলো আনন্দময়, ইতিবাচক মনোভাব...মার্কিনীরা বন্ধুত্বপূর্ণ, আত্মবিশ্বাসী, আশাবাদী এবং তাদের মধ্যে হিংসা নেই।" ১৯২২ সালে ছয় মাসের ভ্রমণ এবং বক্তৃতা সফরের অংশ হিসাবে তিনি এশিয়া ও পরে ফিলিস্তিনে ভ্রমণ করেন। তিনি সিঙ্গাপুর, সিলন এবং জাপানে গিয়েছিলেন এবং কয়েক হাজার জাপানীদের কয়েকটি ধারাবাহিক বক্তৃতা দিয়েছিলেন। প্রথম বক্তৃতার পরে তিনি ইম্পেরিয়াল প্রাসাদে সম্রাট এবং সম্রাজ্ঞীর সাথে সাক্ষাত করেছিলেন। সেখানে হাজার হাজার মানুষ তাকে দেখতে এসেছিল। ছেলেদের উদ্দেশে লেখা একটি চিঠিতে তিনি জাপানিদের সম্পর্কে নিজের ধারণা ব্যক্ত করতে গিয়ে তাদের বিনয়ী, বুদ্ধিমান, বিবেচ্য এবং শিল্পের প্রতি সত্য অনুভূতি থাকার কথা বর্ণনা করেছিলেন। ১৯২২-২৩ সালের এশিয়ার সফর সম্পর্কে তাঁর নিজস্ব ভ্রমণ ডায়েরিতে তিনি চীনা, জাপানি এবং ভারতীয় জনগণের সম্পর্কে কিছু মতামত প্রকাশ করেছেন, যা ২০১৮ সালে পুনরায় আবিষ্কারের পর জেনোফোবিক এবং বর্ণবাদী হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। ১৯২২ সালের ডিসেম্বরে স্টকহোমে ব্যক্তিগতভাবে তিনি পদার্থবিজ্ঞানের নোবেল গ্রহণ করতে পারেননি কারণ তিনি সুদূর প্রাচ্যে ভ্রমণরত ছিলেন। একজন জার্মান কূটনীতিক তার জায়গায় বক্তৃতা দিয়েছিলেন, যেখানে তিনি আইনস্টাইনকে কেবল একজন বিজ্ঞানী হিসাবেই নয়, আন্তর্জাতিক শান্তিরক্ষী কর্মী হিসাবেও প্রশংসা করেছিলেন। ফিরতি ভ্রমণে তিনি ফিলিস্তিনে ১২ দিন কাটিয়েছিলেন। সেখানে তাকে এমনভাবে আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল যেন তিনি কোনো পদার্থবিদ নন বরং কোনো দেশের রাষ্ট্রপতি। হাই কমিশনার স্যার হারবার্ট স্যামুয়েল এর বাসায় পৌঁছানোর পরে তাকে সামরিক অভিবাদন জানানো হয়েছিল। তাকে সংবর্ধনা জানানোর সময় ভবনটিতে তাকে দেখা এবং তার কথা শোনার জন্য মানুষের ভীর হয়ে গিয়েছিল। দর্শকদের সাথে আলাপকালে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেছিলেন যে ইহুদি জনগণ বিশ্বে একটি শক্তি হিসাবে স্বীকৃতি পেতে শুরু করেছে। ১৯২৩ সালে দুই সপ্তাহের জন্য সংক্ষিপ্তভাবে স্পেনে ভ্রমণ করেছিলেন যেখানে তিনি রাজা দ্বাদশ আলফোনসোর কাছ থেকে ডিপ্লোমা গ্রহণ করেছিলেন এবং তাকে স্প্যানিশ একাডেমী অফ সায়েন্সেস এর সদস্যপদ প্রদান করা হয়েছিল। থাম্ব|বুদ্ধিজীবী সহযোগিতা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কমিটির (লীগ অফ নেশনস) অধিবেশনে আলবার্ট আইনস্টাইন। তিনি ১৯২২ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত এর সদস্য ছিলেন। ১৯২২ থেকে ১৯৩২ সাল পর্যন্ত আইনস্টাইন জেনেভায় লীগ অফ নেশনস এর বুদ্ধিজীবী সহযোগিতা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক কমিটির সদস্য ছিলেন (১৯২৩–১৯২৪ সালে কয়েক মাসের বিরতি সহ)। এই সংস্থার মূল উদ্দেশ্য ছিল বিজ্ঞানী, গবেষক, শিক্ষক, শিল্পী এবং বুদ্ধিজীবীদের মধ্যে আন্তর্জাতিক বিনিময় প্রচার করা। মূলত সুইস প্রতিনিধি হিসাবে কাজ করার কথা থাকলেও সেক্রেটারি-জেনারেল এরিক ড্রামন্ডকে ক্যাথলিক কর্মী ওসকার হেলেকি এবং জিউসেপ মোত্তা জার্মান প্রতিনিধি হওয়ার জন্য রাজি করিয়েছিলেন যেকারণে গনজাগে ডি রেনল্ড সুইস প্রতিনিধির স্থান গ্রহণ করেছিলেন এবং সেখান থেকে তিনি সনাতনবাদী ক্যাথলিক মূল্যবোধ প্রচার করেছিলেন। আইনস্টাইনের প্রাক্তন পদার্থবিজ্ঞান অধ্যাপক হেনড্রিক লরেঞ্জ এবং পোলিশ রসায়নবিদ মেরি কুরিও এই কমিটির সদস্য ছিলেন। বৈজ্ঞানিক কর্মজীবন আইনস্টাইন তার জীবনে শত শত বই এবং গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। তিনি তিন শতাধিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র এবং ১৫০ টি অবৈজ্ঞানিক গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। ২০১৪ সালের ৫ ডিসেম্বর বিশ্ববিদ্যালয় এবং সংরক্ষণাগারগুলি ঘোষণা করেছিল যে আইনস্টাইনের প্রকাশিত গবেষণাপত্রে ৩০,০০০ এরও বেশি অনন্য নথি রয়েছে। আইনস্টাইনের বুদ্ধিগত কৃতিত্ব এবং মৌলিকত্ব "আইনস্টাইন" শব্দটিকে "প্রতিভা" শব্দের সমার্থক করে তুলেছে। নিজে যা যা করেছিলেন সেগুলো ছাড়াও তিনি বোস-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান, আইনস্টাইন রেফ্রিজারেটর সহ বিভিন্ন প্রকল্পে অন্যান্য বিজ্ঞানীদের সহযোগিতা করেছিলেন। ১৯০৫ - অ্যানাস মিরাবিলিস এর গবেষণাপত্র অ্যানাস মিরাবিলিস এর গবেষণাপত্র হল ১৯০৫ সালে আইনস্টাইনের প্রকাশিত চারটি গবেষণাপত্র। এগুলো হলো আলোক তড়িৎ ক্রিয়া, ব্রাউনীয় গতি, বিশেষ আপেক্ষিকতা এবং E = mc2 যা বৈজ্ঞানিক সাময়িকী Annalen der Physik এ প্রকাশিত হয়েছিল। এই চারটি গবেষণাপত্র আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের ভিত্তি গঠনে যথেষ্ট অবদান রেখেছিল এবং স্থান, সময় এবং পদার্থ সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দেয়। চারটি গবেষণাপত্র হলো: শিরোনাম (অনুবাদিত)মূল বিষয়বস্তুগৃহীতপ্রকাশিততাৎপর্য"হিউরিস্টিক দৃষ্টিভঙ্গীতে আলোর উৎপাদন এবং রূপান্তর সংক্রান্ত"আলোক তড়িৎ ক্রিয়া১৮ মার্চ৯ জুনএই ধারণা প্রবর্তিত হয় যে, শক্তির বিনিময় কেবলমাত্র নির্দিষ্ট পরিমানেই (কোয়ান্টায়) হয়ে থাকে। এই ধারণাটি কোয়ান্টাম তত্ত্বের প্রাথমিক বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল।"তাপের আণবিক গতিতত্ত্ব অনুযায়ী স্থির তরলে নিমজ্জিত ক্ষুদ্র কণার গতি সম্পর্কিত"ব্রাউনীয় গতি১১ মে১৮ জুলাইপরিসংখ্যান পদার্থবিজ্ঞানের প্রয়োগকে সমর্থন করে পারমাণবিক তত্ত্বের জন্য পরীক্ষামূলক প্রমাণ ব্যাখ্যা করে।"গতিশীল বস্তুর তড়িৎচুম্বকত্ব সম্পর্কিত"বিশেষ আপেক্ষিকতা৩০ জুন২৬ সেপ্টেম্বরবলবিদ্যায় কিছু পরিবর্তন সাধনের মাধ্যমে বলবিদ্যার সূত্রগুলির সাথে বিদ্যুৎ এবং চৌম্বকীয়তা সম্পর্কিত ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণগুলির মিলনসাধন করে। ফলস্বরূপ, বিশ্লেষণের ভিত্তিতে প্রমাণ করা যায় যে আলোর গতি পর্যবেক্ষকের গতি থেকে স্বতন্ত্র। "আলোকিত ইথার" এর ধারণাটিকে বাতিল করে দেয়। "কোনো বস্তুর জড়তা কি এর শক্তির উপর নির্ভর করে?"ভর-শক্তি সমতা২৭ সেপ্টেম্বর২১ নভেম্বরভর এবং শক্তির সমতা, (এর সাথে মাধ্যাকর্ষণের কারণে আলোর বেঁকে যাওয়া জড়িত), "স্থির ভর" এর অস্তিত্ব, এবং পারমাণবিক শক্তির ভিত্তি। পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা তাপগতীয় অস্থিরতা এবং পরিসংখ্যানিক বলবিদ্যা আইনস্টাইনের প্রথম গবেষণাপত্রটি ১৯০০ সালে Annalen der Physik সাময়িকীতে জমা দেয়েছিলেন। এই পত্রটি ছিল কৈশিক ক্রিয়ার উপর। এটি ১৯০১ সালে "Folgerungen aus den Capillaritätserscheinungen" শিরোনামে প্রকাশিত হয়েছিল, যাকে অনুবাদ করলে "কৈশিকতা ঘটনার উপসংহার" হয়। ১৯০২-১৯০৩ সালে তার প্রকাশিত দুটি গবেষণাপত্রের (থার্মোডায়নামিক্স) মাধ্যমে পারমাণবিক ঘটনাকে একটি পরিসংখ্যানগত দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করা হয়েছিল। এই গবেষণাপত্রগুলি ছিল ব্রাউনীয় গতি সম্পর্কিত ১৯০৫ সালের গবেষণাপত্রের ভিত্তি, যা দেখিয়েছিল যে ব্রাউনীয় গতিকে অণু পরমানুর অস্তিত্বের দৃঢ় প্রমাণ হিসাবে গণ্য করা যেতে পারে। তাঁর ১৯০৩ এবং ১৯০৪ সালের গবেষণা মূলত পরমাণুর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ার উপর সীমাবদ্ধ পারমাণবিক আকারের প্রভাব নিয়ে উদ্বিগ্ন ছিল। বিশেষ আপেক্ষিকতা আইনস্টাইনের গবেষণাপত্র "Zur Elektrodynamik bewegter Körper" (গতিশীল বস্তুর তড়িৎগতিবিজ্ঞান সম্পর্কিত) ১৯০৫ সালের ৩০ জুন সংগ্রহ হরা হয়েছিল এবং একই বছর ২৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশিত হয়েছিল। এটি বলবিদ্যার সুত্রে কিছু পরিবর্তন সাধন করার মাধ্যমে ম্যাক্সওয়েলের সমীকরণসমূহ (বৈদ্যুতিক এবং চৌম্বকীয়তার সূত্র) এবং নিউটনীয় বলবিদ্যার সূত্রগুলোর মধ্যে বিরোধের মীমাংসা করে। পর্যবেক্ষণমূলকভাবে, এই পরিবর্তনগুলির প্রভাব উচ্চ গতিসম্পন্ন (আলোর গতিবেগের নিকটে) বস্তুর ক্ষেত্রে সবচেয়ে স্পষ্ট বুঝা যায়। এই গবেষণাপত্রে বিকশিত তত্ত্ব পরে আইনস্টাইনের বিশেষ আপেক্ষিকতা তত্ত্ব হিসাবে পরিচিতি লাভ করে। আইনস্টাইনের লেখা থেকে প্রমাণ পাওয়া যায় যে তিনি তাঁর প্রথম স্ত্রী মিলেভা মেরিক এই গবেষণাপত্রে তাকে সহযোগিতা করেছিলেন। এই গবেষণাপত্র অনুযায়ী, আপেক্ষিকভাবে চলমান পর্যবেক্ষকের কাঠামো থেকে যখন পরিমাপ করা হয়, তখন একটি চলন্ত বস্তুতে বহন করা একটি ঘড়ি ধীরে চলবে এবং বস্তুটি নিজেও তার গতির দিক বরাবর দৈর্ঘ্য সংকুচিত হবে। এই ঘটনা দুইটিকে সাধারণত কাল দীর্ঘায়ন এবং দৈর্ঘ্য সংকোচন বলে অভিহিত করা হয়। এছাড়া বেগ বৃদ্ধির সাথে সাথে বস্তুটির ভর বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এই গবেষণাপত্রে এই যুক্তিও দেওয়া হয়েছিল যে লুমিনিফেরাস ইথার (তৎকালীন পদার্থবিজ্ঞানে অন্যতম শীর্ষস্থানীয় তাত্ত্বিক সত্তা) এর ধারণা অনাবশ্যক ছিল। ভর-শক্তির সমতুল্যতার বিষয়ে তাঁর গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন তাঁর বিশেষ আপেক্ষিকতা সমীকরণের ফলস্বরূপ E = mc2 সমীকরণটির প্রবর্তন করেছিলেন। আইনস্টাইনের ১৯০৫ সালের আপেক্ষিকতার তত্ত্ব অনেক বছর ধরেই বিতর্কিত থেকে গেলেও, ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এর মাধ্যমে শুরু করে শীর্ষস্থানীয় পদার্থবিদরা তার এই তত্ত্বকে গ্রহণ করেছিলেন। আইনস্টাইন মূলত গতিবিদ্যার (চলমান বস্তুর অধ্যয়ন) পদগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ আপেক্ষিকতার প্রবর্তন করেছিলেন। ১৯০৮ সালে হারমান মিনকোভস্কি জ্যামিতিক ক্ষেত্রে বিশেষ আপেক্ষিকতাকে স্থান-কালের তত্ত্ব হিসাবে পুনরায় ব্যাখ্যা করেছিলেন। আইনস্টাইন তাঁর ১৯১৫ সালের সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বে মিনকোভস্কির ব্যাখ্যা গ্রহণ করেছিলেন। সাধারণ আপেক্ষিকতা সাধারণ আপেক্ষিকতা এবং সমতা নীতি alt=Black circle covering the sun, rays visible around it, in a dark sky.|থাম্ব|ডানে_উপরে|এডিংটনের তোলা সূর্যগ্রহণের ছবি সাধারণ আপেক্ষিকতা একটি মহাকর্ষ তত্ত্ব যা আইনস্টাইন ১৯০৭ থেকে ১৯১৫ সালের মধ্যে বিকাশ করেছিলেন। সাধারণ আপেক্ষিকতা অনুসারে, কোনো ভরের কারণে সৃষ্ট মহাকর্ষীয় বলের ফলে ওই ভর কর্তৃক স্থান-কাল বেঁকে যায়। সাধারণ আপেক্ষিকতা আধুনিক জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যায় একটি প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম হিসাবে বিকাশ লাভ করেছে। এটি কৃষ্ণগহ্বর সম্পর্কে বর্তমান বোধগম্যতার ভিত্তি প্রদান করে, যেখানে মহাকর্ষীয় আকর্ষণ বল এতই শক্তিশালী যে সেখান থেকে আলো পর্যন্ত বেরিয়ে আসতে পারে না। আইনস্টাইন পরবর্তীতে বলেছিলেন যে, সাধারণ আপেক্ষিকতা বিকাশের কারণ বিশেষ আপেক্ষিকতায় গতির বিষয়টি সন্তোষজনক ছিল না এবং এমন একটি তত্ত্ব যা গোড়া থেকেই গতির কোনও অবস্থা উপস্থাপন করে না (এমনকি ত্বরিত বস্তুরও) তা অধিক সন্তোষজনক ছিল। ফলস্বরূপ ১৯০৭ সালে তিনি বিশেষ আপেক্ষিকতার অধীনে ত্বরণ সম্পর্কিত একটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেছিলেন। "আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং এর থেকে প্রাপ্ত সিদ্ধান্ত সম্পর্কিত" (অনুবাদিত) শিরোনামের এই গবেষণাপত্রে তিনি যুক্তি দিয়েছিলেন যে মুক্ত পতন একধরনের অন্তর্বর্তী গতি (inertial motion) এবং মুক্তভাবে পতনশীল পর্যবেক্ষকের ক্ষেত্রেও আপেক্ষিকতার বিশেষ তত্ত্ব প্রযুক্ত হবে এবং এই যুক্তিকেই সমতা নীতি বলা হয়। একই গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন মহাকর্ষীয় সময় প্রসারণ, মহাকর্ষীয় লোহিত সরণ এবং আলোর অবনমনের ঘটনাও গণনা করেছিলেন। ১৯১১ সালে আইনস্টাইন "আলোর বিস্তারের উপর মহাকর্ষের প্রভাব সম্পর্কিত" নামে আরেকটি গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন যেখানে তিনি ১৯০৭ সালে প্রকাশিত গবেষণাপত্রের বিষয়বস্তু সম্প্রসারিত করে বৃহৎ বস্তু কর্তৃক আলোর অবনমনের পরিমাণ অনুমান করেন। সুতরাং এভাবে সাধারণ আপেক্ষিকতার তাত্ত্বিক গণনা প্রথমবারের মতো পরীক্ষামূলকভাবে পরীক্ষা করা যেতে পারে। মহাকর্ষীয় তরঙ্গ ১৯১৬ সালে আইনস্টাইন মহাকর্ষীয় তরঙ্গ গণনা করেছিলেন, স্থান-কালের বক্রতায় উৎপন্ন ঢেউ যা তরঙ্গ হিসাবে বিস্তার লাভ করে এবং এর উৎস থেকে বাইরের দিকে সরে যাওয়ার সময় মহাকর্ষীয় বিকিরণ হিসেবে শক্তি পরিবহন করে। সাধারণ আপেক্ষিকতার অধীনে মহাকর্ষীয় তরঙ্গের অস্তিত্ব লরেন্টজ আগ্রাসনের কারণে সম্ভব যা মহাকর্ষের ভৌত মিথস্ক্রিয়া প্রচারের সসীম গতির ধারণা বহন করে। ১৯৭০ এর দশকে ঘনিষ্ঠভাবে ঘুরে বেড়ানো একজোড়া নিউট্রন তারকা (পিএসআর বি১৯১৩+১৬) পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে সর্বপ্রথম পরোক্ষভাবে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ শনাক্ত করা গিয়েছিল। তাদের কক্ষপথ ক্ষয়ের ব্যাখ্যা ছিল তাদের মধ্য থেকে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ নির্গত হওয়া। আইনস্টাইনের এই তত্ত্বটি ২০০৬ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি নিশ্চিত হয়েছিল যখন লিগো-এর গবেষকরা মহাকর্ষীয় তরঙ্গের প্রথম পর্যবেক্ষণ প্রকাশ করেছিলেন যা এই তত্ত্বটি প্রকাশের প্রায় একশত বছর পর ২০১৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পৃথিবীতে শনাক্ত করা হয়েছে। হোল আর্গুমেন্ট এবং এন্টওয়ার্ফ তত্ত্ব সাধারণ আপেক্ষিকতা বিকাশের সময়, আইনস্টাইন তত্ত্বের গেজ আগ্রাসন সম্পর্কে বিভ্রান্ত হয়ে পড়েন। তিনি একটি যুক্তি গঠন করেছিলেন যার ফলে এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে একটি সাধারণ আপেক্ষিক ক্ষেত্র তত্ত্ব অসম্ভব। তিনি সম্পূর্ণরূপে সাধারণ সমবায় টেনসর সমীকরণের সন্ধান পরিত্যাগ করেন এবং এমন সমীকরণের সন্ধান করেন যা কেবল সাধারণ রৈখিক রূপান্তরের অধীনে অদম্য হবে। ১৯১৩ সালের জুনে প্রকাশিত এন্টওয়ার্ফ ('খসড়া') তত্ত্বই এই তদন্তগুলির ফলাফল ছিল। এর নাম আনুসারেই এটি একটি তত্ত্বের নকশা ছিল, যা সাধারণ আপেক্ষিকতার তুলনায় কম মার্জিত এবং এর থেকে আরও কঠিন ছিল। দুই বছরেরও বেশি নিবিড় পরিশ্রমের পরে আইনস্টাইন বুঝতে পেরেছিলেন যে হোল আর্গুমেন্ট একটি ভুল ছিল এবং ১৯১৫ সালের নভেম্বরে তত্ত্বটি ত্যাগ করেছিলেন। ভৌত বিশ্বতত্ত্ব ডান|থাম্ব|১৯৩৩ সালের জানুয়ারিতে ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজিতে মিলিকান এবং জর্জ ল্যমেত্র্ এর সাথে আইনস্টাইন। ১৯১৭ সালে আইনস্টাইন মহাবিশ্বের সামগ্রিক কাঠামোর সাথে আপেক্ষিকতার সাধারণ তত্ত্ব প্রয়োগ করেছিলেন এবং এর মাধ্যমে তিনি আবিষ্কার করেছিলেন যে মহাবিশ্ব গতিশীল এবং এটি সংকুচিত বা প্রসারিত হচ্ছে। গতিশীল মহাবিশ্ব সম্পর্কে পর্যবেক্ষণমূলক প্রমাণ না থাকায় তত্ত্বটি যেন স্থির মহাবিশ্বের গণনা করে এজন্য আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণে মহাজাগতিক ধ্রুবকের ব্যবহার করেছিলেন। মাকের নীতি সম্পর্কে আইনস্টাইনের ধারণা অনুযায়ী পরিবর্তিত ক্ষেত্র সমীকরণটি বদ্ধ বক্রতার স্থির মহাবিশ্বের পূর্বাভাস দিয়েছিল। এই মডেলটি আইনস্টাইন মহাবিশ্ব বা আইনস্টাইনের স্থির মহাবিশ্ব হিসাবে পরিচিতি লাভ করেছিল। ১৯২৯ সালে এডউইন হাবল নীহারিকার মন্দা আবিষ্কার করলে আইনস্টাইন মহাবিশ্বের স্থির মডেলটি ত্যাগ করেন এবং ১৯৩১ সালে ফ্রিডম্যান-আইনস্টাইন মহাবিশ্ব[127][127] এবং ১৯৩২ সালে আইনস্টাইন-ডি সিটার মহাবিশ্ব নামের দুটি গতিশীল মডেল প্রস্তাব করেছিলেন। উভয় মডেলে আইনস্টাইন মহাজাগতিক ধ্রুবকের ব্যবহার ত্যাগ করেছিলেন এবং এটিকে "তাত্ত্বিকভাবে অ-সন্তোষজনক" বলে দাবি করেছিলেন। আইনস্টাইনের অনেক জীবনীগ্রন্থে দাবি করা হয় যে আইনস্টাইন পরবর্তী বছরগুলিতে মহাজাগতিক ধ্রুবকে তাঁর "বৃহত্তম ভুল" বলে উল্লেখ করেছিলেন। জ্যোতির্বিজ্ঞানী মারিও লিভিও সম্প্রতি এই দাবির বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করেছেন এবং পরামর্শ দিয়েছেন যে এটি অতিরঞ্জিত হতে পারে। ২০১৩ সালের শেষদিকে আইরিশ পদার্থবিদ করম্যাক ও'রাইফার্টেঘ এর নেতৃত্বে একটি দল প্রমাণ পেয়েছে যে নীহারিকা মন্দার বিষয়ে হাবলের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কে জানার পরপরই আইনস্টাইন মহাবিশ্বের একটি স্থির-অবস্থা মডেল বিবেচনা করেছিলেন। ১৯৩১ সালের প্রথম দিকে লেখা আপাতদৃষ্টিতে অবহেলিত একটি পাণ্ডুলিপিতে আইনস্টাইন প্রসারিত হওয়া মহাবিশ্বের এমন একটি মডেল আবিষ্কার করেছিলেন যেখানে পদার্থের ক্রমাগত সৃষ্টির কারণে পদার্থের ঘনত্ব স্থির থাকে। এই প্রক্রিয়াটিকে তিনি মহাজাগতিক ধ্রুবকের সাথে যুক্ত করেছিলেন। যেমনটি তিনি গবেষণাপত্রে বলেছিলেন, "এরপরে আমি সমীকরণের (১) এমন একটি সমাধানের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই যা হাবলের মূল বিষয়গুলির কারণ ব্যাখ্যা করতে পারবে, এবং যেখানে সময়ের সাথে ঘনত্ব স্থির থাকে "..." যদি ভৌতভাবে সীমাবদ্ধ একটি আয়তন বিবেচনা করা হয় তবে পদার্থের কণা অবিচ্ছিন্নভাবে এটি ছেড়ে চলে যাবে। ঘনত্ব স্থিতিশীল থাকার জন্য আয়তনটিতে মহাশুন্য থেকে অবিরত পদার্থের নতুন কণা গঠিত হতে হবে। " দেখা যায় যে আইনস্টাইন হয়েল, বন্ডি এবং গোল্ডের বহু বছর আগে প্রসারিত হতে থাকা মহাবিশ্বের একটি স্থির-অবস্থা মডেল বিবেচনা করেছিলেন। তবে আইনস্টাইনের স্থির-অবস্থা মডেলটিতে একটি মৌলিক ত্রুটি ছিল এবং একারণে তিনি দ্রুত এই ধারণাটি ত্যাগ করেছিলেন। শক্তি ভরবেগ সিউডোটেনসর সাধারণ আপেক্ষিকতায় স্থানকাল গতিশীল থাকায় কীভাবে সংরক্ষিত শক্তি এবং গতিবেগ শনাক্ত করা যায় তা দেখা মুশকিল। নোয়েথারের উপপাদ্য মাধ্যমে ট্রান্সলেশন ইনভ্যারিয়েন্সসহ এই পরিমাণগুলি ল্যাগ্রাঞ্জিয়ান থেকে নির্ধারিত করা যায়, তবে সাধারণ কোভ্যারিয়েন্স ট্রান্সলেশন ইনভ্যারিয়েন্সকে কিছুটা গেজ প্রতিসাম্য করে তোলে। এই কারণে নোয়েথারের উপপাদ্য অনুযায়ী সাধারণ আপেক্ষিকতায় উদ্ভূত শক্তি এবং ভরবেগ একটি সত্যিকারের টেনসর তৈরি করে না। আইনস্টাইন যুক্তি দিয়েছিলেন যে এটি একটি মৌলিক কারণে সত্য এবং তা হলো, নির্দিষ্ট বিকল্প স্থানাঙ্কের মাধ্যমে মহাকর্ষ ক্ষেত্র বিলুপ্ত করা যায়। তিনি দৃঢ়ভাবে বলেছিলেন যে, প্রকৃতপক্ষে অ-সমবায় শক্তি ভরবেগ সিউডোটেনসরই মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রে শক্তি ভরবেগের বণ্টনের সর্বোত্তম ব্যাখ্যা। এই পদ্ধতিটি লেভ ল্যান্ডো এবং এভজেনি লিফশিটস অনুরণিত করেছিলেন এবং এটি একটি মানদণ্ডে পরিনত হয়েছে। ১৯১৭ সালে এরভিন শ্রোডিঙার এবং অন্যরা সিউডোটেনসরের মতো অ-সমবায় বস্তুর ব্যবহারের তীব্র সমালোচনা করেছিলেন। ক্ষুদ্রবিবর ১৯৩৩ সালে আইনস্টাইন নাথান রোসেনের সাথে একটি ওয়ার্মহোলের মডেল তৈরি করেছিলেন, যা প্রায়শই আইনস্টাইন-রোসেন ব্রিজ নামে পরিচিত। তাঁর অনুপ্রেরণা ছিল গবেষণাপত্রে বর্ণিত "মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র কি প্রাথমিক কণিকাগুলি গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে?" বিষয়বস্তুর সাথে সামঞ্জস্য রেখে মহাকর্ষীয় ক্ষেত্র সমীকরণের সমাধান হিসাবে প্রাথমিক কণাগুলির মডেল উপস্থাপন করা। এই সমাধানগুলি দুটি শূন্যস্থানের দুটি স্থানে ছিদ্র করে শোয়ার্জচাইল্ড কৃষ্ণগহ্বরের সাহায্যে যুক্ত করে একটি ব্রিজ তৈরি করেছিল। যদি ক্ষুদ্রবিবরের এক প্রান্ত ধনাত্মক চার্জসম্পন্ন হয় তবে অপর প্রান্ত ঋণাত্মক চার্জসম্পন্ন হবে। এই বৈশিষ্ট্যের কারণেই আইনস্টাইন বিশ্বাস করেছিলেন যে এভাবে কণা এবং বিপরীত কণার জোড়াও ব্যাখ্যা করা সম্ভব। আইনস্টাইন – কার্টান তত্ত্ব alt=Einstein, sitting at a table, looks up from the papers he is reading and into the camera.|থাম্ব|বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজ অফিসে আইনস্টাইন, ১৯২০ ঘূর্ণনশীল বিন্দু কণার ক্ষেত্রে সাধারণ আপেক্ষিকতা প্রয়োগের জন্য একটি অপ্রতিসম অংশ দরকার ছিল। তবে এর জন্য অ্যাফাইন সংযোগকে সর্বজনীন করা প্রয়োজন। আইনস্টাইন এবং কার্টান ১৯২০ এর দশকে এই পরিবর্তনটি করেছিলেন। গতির সমীকরণ সাধারণ আপেক্ষিকতা তত্ত্বের একটি মৌলিক সূত্র হচ্ছে আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণ, যা স্থানের বেঁকে যাওয়া বর্ণনা করে। জিওডেসিক সমীকরণ, যা আইনস্টাইন ক্ষেত্র সমীকরণের সাহায্যে কণাসমূহ কীভাবে স্থানান্তরিত হয় তা বর্ণনা করে। যেহেতু সাধারণ আপেক্ষিকতার সমীকরণগুলি রৈখিক নয়, তাই কৃষ্ণগহ্বরের মতো খাঁটি মহাকর্ষীয় ক্ষেত্রগুলি থেকে তৈরি প্রচুর পরিমাণে শক্তি একটি প্রক্ষেপণ পথের দিকে অগ্রসর হয় যা আইনস্টাইন ক্ষেত্রের সমীকরণগুলি দ্বারাই নির্ধারিত হয়, কোনও নতুন সূত্র দ্বারা নয়। তাই আইনস্টাইন প্রস্তাব করেছিলেন যে কৃষ্ণগহ্বরের মতো একক সমাধানের পথটি সাধারণ আপেক্ষিকতার থেকে জিওডেসিক হবে। কৌণিক গতিবিহীন বিন্দু বস্তুর জন্য আইনস্টাইন, ইনফিল্ড এবং হফম্যান এবং ঘূর্ণনশীল বস্তুর জন্য রয় কের এটি প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন। পুরাতন কোয়ান্টাম তত্ত্ব ফোটন এবং শক্তি কোয়ান্টা alt=|থাম্ব|আলোকতড়িৎ ক্রিয়া। বাম দিক থেকে আগত ফোটন ধাতব ফলকে (নিচে) আঘাত করে, এবং যার ইলেকট্রন নির্গত হয়, যা ডানদিকে উড়ন্ত হিসাবে চিত্রিত করা হয়ছে। ১৯০৫ সালে আইনস্টাইন দাবি করেছিলেন যে আলো নিজেই স্থানীয়ীকৃত কণা (কোয়ান্টা) নিয়ে গঠিত। ম্যাক্স প্ল্যাঙ্ক এবং নিলস বোরসহ সকল পদার্থবিজ্ঞানী আইনস্টাইনের আলো কোয়ান্টা সার্বজনীনভাবে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। রবার্ট মিলিকানের আলোকতড়িৎ ক্রিয়ার উপর বিস্তারিত গবেষণা এবং কম্পটন ক্রিয়া পরিমাপের পর ১৯১৯ সালে সার্বজনীনভাবে স্বীকৃত হয়েছিল। আইনস্টাইন এই সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন যে f কম্পাঙ্কবিশিষ্ট প্রত্যেক তরঙ্গ hf শক্তিবিশিষ্ট ফোটনের সমষ্টির সাথে সম্পর্কিত, যেখানে h হলো প্ল্যাঙ্কের ধ্রুবক। তিনি বেশি কিছু বলেন নি কারণ তরঙ্গের সাথে কণা কীভাবে সম্পর্কিত তা তিনি জানতেন না। তবে তার মতে এই ধারণাটি কিছু পরীক্ষামূলক ফলাফল ব্যাখ্যা করবে, বিশেষত আলোকতড়িৎ ক্রিয়া। বসু-আইনস্টাইন পরিসংখ্যান তরঙ্গ-কণা দ্বৈততা পদার্থ তরঙ্গ আইনস্টাইন লুই ডি ব্রগলির তত্ত্ব আবিষ্কারের পর তাঁর ধারণাকে সমর্থন করেছিলেন, যা প্রথমে সন্দেহজনকভাবে গৃহীত হয়েছিল। সেই যুগের অন্য একটি প্রধান গবেষণাপত্রে আইনস্টাইন ডি ব্রগলি তরঙ্গগুলির জন্য একটি তরঙ্গ সমীকরণ দিয়েছেন, যা আইনস্টাইনের মতে বলবিদ্যার হ্যামিল্টন-জ্যাকোবি সমীকরণ ছিল। এই গবেষণাপত্রটি এরভিন শ্রোডিঙারকে তার ১৯২৬ সালের আবিষ্কারের জন্য অনুপ্রাণিত করেছিল। আরো পড়ুন আলবার্ট আইনস্টাইনের মস্তিষ্ক অ্যানাস মিরাবিলিস গবেষণাপত্র আপেক্ষিকতা তত্ত্ব তথ্যসূত্র ও মন্তব্য উদ্ধৃতি উদ্ধৃত কাজ বহিঃসংযোগ অনলাইনে আইনস্টাইন আর্কাইভ "আইনস্টাইন: ভাবমূর্তি ও প্রভাব", পদার্থ বিজ্ঞানের ইতিহাসে। "AIP Center for the History of Physics" site: biography, audio and full site as downloadable PDF for classroom use. American Institute of Physics "এমিলিও সেগ্রী ভিজ্যুয়াল আর্কাইভ: আলবার্ট আইনস্টাইন", আমেরিকান ইনিষ্টিটউট অব ফিজিক্স "ম্যাক টিউটর গণিত আর্কাইভের ইতিহাস": আলবার্ট আইনস্টাইন সেইন্ট অ্যান্ড্রিউ বিশ্ববিদ্যালয়, গণিত ও পরিসংখ্যান স্কুল (huge bibliography for further reading) "আইনস্টাইনের বৃহত চিন্তাচেতনা" NOVA television documentary series website, Public Broadcasting Service (preview available online) নোবেল প্রাইজ সংস্থা:১৯২১ সালে পদার্থ বিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার Mathematics Genealogy Project:আলবার্ট আইনস্টাইন, Mathematics Genealogy Project (a service of the NDSU Department of Mathematics, in association with the American Mathematical Society) আলবার্ট আইনস্টাইনের ছায়া বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রে আইনস্টাইনের অবদানর উপর ৪ পর্বের ধারাবিহিক: বিবিসি রেডিও বিষয়শ্রেণী:১৮৭৯-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৯৫৫-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:জার্মান পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:সুইজারল্যান্ডীয় পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:মার্কিন নোবেল বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:জার্মান নোবেল বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:সুইজারল্যান্ডীয় নোবেল বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:মার্কিন ইহুদি বিষয়শ্রেণী:জার্মান ইহুদি বিষয়শ্রেণী:সুইজারল্যান্ডীয় ইহুদি বিষয়শ্রেণী:তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:বিশ্বতত্ত্ববিদ বিষয়শ্রেণী:মানবতাবাদী বিষয়শ্রেণী:ইহুদি দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:ইহুদি বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:মাক্স প্লাংক পদক বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:রাষ্ট্রহীন ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:বিজ্ঞানের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:ইউএসএসআর-এর বিজ্ঞান একাডেমির সম্মানিত সদস্য বিষয়শ্রেণী:মার্কিন অজ্ঞেয়বাদী বিষয়শ্রেণী:আইনস্টাইন পরিবার বিষয়শ্রেণী:জার্মান সমাজতন্ত্রী বিষয়শ্রেণী:জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:জার্মান জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:ইহুদি অজ্ঞেয়বাদী বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন পদার্থবিদ বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন লেখক বিষয়শ্রেণী:মার্কিন চিঠি লেখক বিষয়শ্রেণী:মার্কিন শান্তিবাদী বিষয়শ্রেণী:মার্কিন বিজ্ঞান লেখক বিষয়শ্রেণী:জার্মান মানবতাবাদী বিষয়শ্রেণী:রয়্যাল নেদারল্যান্ডস কলা ও বিজ্ঞান একাডেমির সদস্য বিষয়শ্রেণী:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য বিষয়শ্রেণী:বিজ্ঞানের দর্শন বিষয়শ্রেণী:কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:কপলি পদক বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:মাতেউচি পদক বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:জুরিখ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:জার্মান নাগরিকত্ব হারানো ব্যক্তি
অর্থনীতিবিদদের তালিকা
https://bn.wikipedia.org/wiki/অর্থনীতিবিদদের_তালিকা
এটি বিশ্বের উল্লেখযোগ্য অর্থনীতিবিদদের নামের তালিকা। এখানে শুধুমাত্র উইকিপিডিয়ায় নিবন্ধ রয়েছে এমন অর্থনীতিবিদদের নাম তাদের শেষ নাম অনুযায়ী বর্ণানুক্রমিকভাবে যোগ করা হয়েছে। অর্থনীতিবিদ অ-অ্যা-আ কেনেথ অ্যারো ল্যাজারাস অ্যারোনসন রবার্ট আউমান মোজাফফর আহমদ আকবর আলি খান অমর্ত্য সেন ই-ঈ মুহাম্মদ ইউনূস - বাংলাদেশের এক মাত্র নোবেল বিজয়ী। এ-ঐ জর্জ একারলফ ফ্রিডরিখ এঙ্গেলস ও-ঔ বিয়াট্রিস ওয়েব ক-খ ড্যানিয়েল কানেমান আহমাদ তেজন কাব্বাহ জন মেনার্ড কেইনস পল ক্রুগম্যান কাজী খলিকুজ্জামান গ-ঘ জন কেনেথ গলব্রেইথ ক্লাইভ গ্রেঞ্জার জ-ঝ জাহিদ হোসেন ট-ঠ জেমস টোবিন ড-ঢ পিটার আর্থার ডায়মন্ড আঙ্গুশ ডিয়াটোন ত-থ জ্যাঁ তিরোল ন জন ফর্ব্‌স ন্যাশ প-ফ পিয়েরে জোসেফ প্রুধোঁ ভিলফ্রেডো পারেটো ক্রিস্টোফার এ. পিসারাইডস রুফস পোলক এডমন্ড এস ফেল্পস ফরাসউদ্দিন আহমেদ ব-ভ আবুল বারকাত জেমস ম্যাকগিল বিউকানান গ্যারি বেকার ম বার্নার্ড ম্যান্ডেভিল টমাস ম্যালথাস কার্ল মার্ক্‌স আলফ্রেড মার্শাল জন স্টুয়ার্ট মিল র ডেভিড রিকার্ডো লিওনেল চার্লস রবিন্স রেহমান সোবহান ল আর্থার লিউইস শ-স ইয়োজেফ শুম্‌পেটার পল স্যামুয়েলসন হার্বার্ট সাইমন হার্নান্দো ডি সোতো রেহমান সোবহান জোসেফ স্টিগলিত্স অ্যাডাম স্মিথ হ ফ্রিড‌রিশ ফন হায়ক * বিষয়শ্রেণী:পেশা অনুযায়ী ব্যক্তিদের তালিকা
জেমস ম্যাকগিল বিউকানান
https://bn.wikipedia.org/wiki/জেমস_ম্যাকগিল_বিউকানান
জেমস ম্যাকগিল বিউকানান জুনিয়র (;জন্ম: ৩ অক্টোবর ১৯১৯ - ৯ জানুয়ারি ২০১৩ ) একজন মার্কিন অর্থনীতিবিদ। তিনি ১৯৮৬ সালে অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার লাভ করেন। জীবনী বিউকানান মিডল টেনেসি স্টেট ইউনিভার্সিটি হতে ১৯৪০ সালে স্নাতক ডিগ্রি লাভ করেন। তিনি ১৯৪১ সালে ইউনিভার্সিটি অফ টেনেসি হতে মাস্টার্স এবং ১৯৪৮ সালে ইউনিভার্সিটি অফ শিকাগো হতে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। বিউকানান দীর্ঘ সময় ধরে জর্জ মেসন বিশ্ববিদ্যালয় এ অধ্যাপনা করেন। তিনি ভার্জিনি স্কুল অফ পলিটিকাল ইকনমি-তে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। এছাড়া তিনি ইউনিভার্সিটি অফ ভার্জিনিয়া (এখানে টমাস জেফারসন সেন্টার স্থাপন করেন), ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাট লস অ্যাঞ্জেলেস, ফ্লরিডা স্টেট ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ টেনেসি, এবং ভার্জিনিয়া পলিটেকনিক ইন্সটিটিউটে শিক্ষকতা করেছেন। অর্থনীতিতে বিউকানানের অবদান হলো লগ-রোলিং, তথা আইন পাস ও অর্থনৈতিক সুবিধা অর্জনের জন্য রাজনীতিবিদদের একজন-অন্যকে সাহায্য করার প্রথার উপরে বিশ্লেষণ ও তত্ত্ব প্রদান করা। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:১৯১৯-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:মার্কিন নোবেল বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:স্কটিশ-আইরিশ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:২০১৩-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মার্কিন নৌ কর্মকর্তা
হার্নান্দো ডি সোতো
https://bn.wikipedia.org/wiki/হার্নান্দো_ডি_সোতো
হার্নান্দো ডি সোতো (Hernando de Soto; জন্ম: ৩রা জুন ১৯৪১) একজন পেরুভীয় অর্থনীতিবিদ, যিনি তার অনানুষ্ঠানিক অর্থনীতির জন্য পরিচিত। তিনি পেরুর লিমায় অবস্থিত ইনস্টিটিউট অফ লিবার্টি এন্ড ডেমোক্রেসি (আইএলডি) এর প্রধান। দে সোতো ১৯৪১ সালের ৩রা জুন পেরুর আরেকুইপায় জন্মগ্রহণ করেন। তার পিতা ছিলেন একজন পেরুভীয় কূটনীতিক। ১৯৪৮ সালে পেরুতে সেনা সংঘর্ষের পর তার পিতামাতা ইউরোপে রাজনৈতিক আশ্রয়ে চলে যান। দে সোতো সুইজারল্যান্ডে জেনাভার ইন্টারন্যাশনাল স্কুলে পড়াশুনা করেন এবং জেনেভার গ্র্যাজুয়েট ইনস্টিটিউট অব ইন্টারন্যাশনাল স্টাডিজ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জন করেন। তিনি পরবর্তীতে অর্থনীতিবিদ, করপোরেট নির্বাহী ও কনসালটেন্ট হিসেবে কাজ করেন। ৩৮ বছর বয়সে তিনি পেরুতে ফিরে আসেন।Source: Investors Business Daily, Monday November 6, 2006. p. A4. Leaders & Success. Article by IBD Reinhardt Kraus. তার ছোট ভাই আলভারো লিমা, নিউ ইয়র্ক সিটি ও জেনেভায় পেরুভীয় কূটনীতিক হিসেবে কাজ করেন। তিনি ২০০৭ সালে জাতিসংঘের সহকারী মহাসচিব পদ থেকে অবসর নেন। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:১৯৪১-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:জীবিত ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:পেরুভীয় অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:পেরুভীয় লেখক বিষয়শ্রেণী:উন্নয়ন অর্থনীতিবিদ
পল ক্রুগম্যান
https://bn.wikipedia.org/wiki/পল_ক্রুগম্যান
পল রবিন ক্রুগম্যান () (জন্ম ২৮শে ফেব্রুয়ারি, ১৯৫৩) একজন মার্কিন অর্থনীতিবিদ। তিনি বর্তমানে প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থশাস্ত্র ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের একজন অধ্যাপক। তিনি অর্থনীতির ওপর প্রচুর বইয়ের লেখক ও ২০০০ সাল থেকে দ্য নিউ ইয়র্ক টাইম্‌স পত্রিকাতে নিয়মিত কলাম লেখক। তার লেখা International Economics: Theory and Policy (বর্তমানে বইটির সপ্তম সংস্করণ চলছে) আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ওপর লেখা একটি প্রামাণ্য পাঠ্যপুস্তক। ১৯৯১ সালে অ্যামেরিকান একোনমিক অ্যাসোসিয়েশন তাকে জন বেট্‌স ক্লার্ক মেডেল প্রদান করে। ক্রুগম্যানকে একজন নব্য-কেইন্‌সীয় অর্থনীতিবিদ মনে করা হয়। ক্রুগম্যান ২০০-রও বেশি প্রবন্ধ ও বিশটির মত বই রচনা করেছেন — এদের মধ্যে কিছু অ্যাকাডেমীয়, কিছু সাধারণ জনগণের জন্য লেখা। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:১৯৫৩-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:জন বেটস ক্লার্ক মেডেল বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন প্রাবন্ধিক বিষয়শ্রেণী:মার্কিন ব্লগার বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন পুরুষ লেখক বিষয়শ্রেণী:মার্কিন নোবেল বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের অধ্যাপক বিষয়শ্রেণী:মার্কিন কলাম লেখক বিষয়শ্রেণী:ইহুদি মার্কিন সাংবাদিক বিষয়শ্রেণী:ইউক্রেনীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:বেলারুশীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:জীবিত ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:মার্কিন পুরুষ প্রাবন্ধিক বিষয়শ্রেণী:বিশ্বায়ন বিষয়ক লেখক বিষয়শ্রেণী:ফোর ফ্রিডমস পুরস্কার প্রাপক
জোসেফ স্টিগ্‌লিট্‌স
https://bn.wikipedia.org/wiki/জোসেফ_স্টিগ্‌লিট্‌স
জোসেফ স্টিগ্‌লিট্‌স‌ ইংরেজি ভাষায়: Joseph Eugene "Joe" Stiglitz) (ফেব্রুয়ারি ৯, ১৯৪৩) এক্কজন মার্কিন অর্থনীতিবিদ৷ ২০০১ সালে জর্জ অ্যাকারলফ এবং মাইকেল স্পেন্স-এর সাথে তথ্য অর্থনীতি (ইনফরমেশন ইকনমিকস) ক্ষেত্রে অবদানের জন্য অর্থনীতিতে নোবেল পুরস্কার পান৷ বিষয়শ্রেণী:মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:১৯৪৩-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:জন বেটস ক্লার্ক মেডেল বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:জীবিত ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:মার্কিন নোবেল বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর মার্কিন অ-কল্পকাহিনী লেখক বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:অ্যামহার্স্ট কলেজের সাবেক শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:ব্রিটিশ অ্যাকাডেমির সভ্য বিষয়শ্রেণী:রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য বিষয়শ্রেণী:রুশ বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির বিদেশী সদস্য বিষয়শ্রেণী:ইহুদি মার্কিন লেখক বিষয়শ্রেণী:শ্রমিক দল (যুক্তরাজ্য) এর ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য বিষয়শ্রেণী:প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:বিশ্বায়ন বিষয়ক লেখক বিষয়শ্রেণী:ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন পুরুষ লেখক বিষয়শ্রেণী:মার্কিন ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সদস্য বিষয়শ্রেণী:ফুলব্রাইট বৃত্তিধারী
ইয়োজেফ শুম্পেটার
https://bn.wikipedia.org/wiki/ইয়োজেফ_শুম্পেটার
থাম্ব|ডান|ইয়োজেফ শুম্পেটার ইয়োজেফ আলইস শুম্পেটারএই বিদেশী ব্যক্তিনামটির বাংলা প্রতিবর্ণীকরণে উইকিপিডিয়া:বাংলা ভাষায় জার্মান শব্দের প্রতিবর্ণীকরণ পাতায় উল্লিখিত নীতিমালা অনুসরণ করা হয়েছে। (; ৮ই ফেব্রুয়ারি, ১৮৮৩ – ৮ই জানুয়ারি, ১৯৫০) একজন প্রভাবশালী অর্থনীতিবিদ এবং রাষ্ট্রবিজ্ঞানী। তিনি বর্তমান চেক প্রজাতন্ত্রের, তৎকালীন অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্যের মোরাভিয়া অঞ্চলে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অস্ট্রীয় ঘরানার অর্থনীতিবিদদের একজন ছিলেন। তিনি পুঁজিবাদী বিকাশ ও ব্যবসা চক্রের উপর তাঁর তত্ত্বগুলির জন্য পরিচিতি লাভ করেন। শুম্পেটার ভিয়েনাতে উচ্চশিক্ষালাভ করে চেরনোভিৎস, গ্রাৎস ও বন শহরের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে অধ্যাপনা করেন। ১৯১৯ সালে তিনি স্বল্প সময়ের জন্য অস্ট্রিয়ার সরকারের অর্থমন্ত্রী হিসেবে কাজ করেন। ১৯৩২ থেকে ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দ পর্যন্ত আমৃত্যু তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করেন। ১৯৪২ সালে তিনি একটি বহুল পঠিত অর্থনীতি বিষয়ক গ্রন্থ প্রকাশ করেন, যার নাম ছিল ক্যাপিটালিজম, সোসিয়ালিজম অ্যান্ড ডেমোক্রেসি ("পুঁজিবাদ, সমাজতন্ত্র ও গণতন্ত্র"); বইটিতে তিনি যুক্তি দেন যেন পুঁজিবাদ তার নিজের সাফল্যের কারণেই এক সময় শেষ হয়ে যাবে এবং এর পরিবর্তে সরকারী নিয়ন্ত্রণ বা সমাজতন্ত্রের কোনও একটি প্রকারভেদ প্রতিষ্ঠা পাবে। ১৯৫৪ সালে তিনি হিস্টরি অভ একোনমিক অ্যানালিসিস নামে একটি গ্রন্থ প্রকাশ করেন, যেখানে অর্থশাস্ত্রের বিশ্লেষণী পদ্ধতিগুলির বিকাশ বিষয়ে একটি বিস্তারিত গবেষণা উপস্থাপন করেন। ১৯১১ সালে তাঁর রচিত টেওরিয়ে ডের ভির্টশাফটলিশেন এন্টভিকলুং ("অর্থনৈতিক উন্নয়নের তত্ত্ব") এবং ১৯৩৯ সালে দুই খণ্ডে প্রকাশিত বিজনেস সাইকেলস: আ থিওরেটিকাল, হিস্টরিকাল, অ্যান্ড স্ট্যাটিস্টিকাল অ্যানালিসিস অভ দ্য ক্যাপিটালিস্ট প্রসেস ("ব্যবসা চক্র: পুঁজিবাদী প্রক্রিয়ার একটি তাত্ত্বিক, ঐতিহাসিক ও পরিসংখ্যানিক বিশ্লেষণ") গ্রন্থগুলিও উল্লেখ্য। শুম্পেটার ১৯৫০ খ্রিস্টাব্দে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কানেটিকাট অঙ্গরাজ্যের টেকোনিক শহরে মৃত্যুবরণ করেন। পাদটীকা বহিঃসংযোগ Retrieved on December 4, 2007. Retrieved on December 4, 2007. Retrieved on April 29, 2013. Retrieved on December 4, 2007. Retrieved on December 4, 2007. Joseph Schumpeter, Selected Writings বিষয়শ্রেণী:১৮৮৩-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৯৫০-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:অস্ট্রীয় অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:অস্ট্রীয় রাষ্ট্রবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর অস্ট্রীয় লেখক বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর পুরুষ লেখক বিষয়শ্রেণী:জার্মানিতে অস্ট্রীয় প্রবাসী বিষয়শ্রেণী:হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:মার্কিন নাগরিকত্ব প্রাপ্ত ব্যক্তি
অ্যাডাম স্মিথ
https://bn.wikipedia.org/wiki/অ্যাডাম_স্মিথ
অ্যাডাম স্মিথ () (১৭২৩-১৭৯০) আধুনিক অর্থশাস্ত্রের জনক হিসেবে পরিচিত৷ তিনি ১৭৭৬ সালে An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations নামক গ্রন্থ লিখে অর্থনীতির মূল বিষয়গুলি সম্পর্কে ধারণা দেন৷ অ্যাডাম স্মিথ স্কটল্যান্ডের ফিফের ক্রিকক্যাল্ডি শহরের একজন রাজস্ব নিয়ন্ত্রকের পুত্র ছিলেন। স্মিথের সঠিক জন্মতারিখ অজানা, কিন্তু তিনি ১৭২৩ সালের ৫ই জুন ক্রিকক্যাল্ডি শহরে খ্রিস্টধর্ম গ্রহণ করেন। ৪ বছর বয়সে একদল ইহুদী তাকে অপহরণ করে। কিন্তু তিনি তার চাচার সহযোগিতায় দ্রুত মুক্ত হন এবং মায়ের কাছে ফেরত যান। ১৪ বছর বয়সে স্মিথ গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, সেখানে তিনি ফ্রান্সিস হাচিসনের (যাকে স্মিথ বলতেন "the never-to-be-forgotten") অধীনে দর্শনশাস্ত্র অধ্যয়ন করেন। তিনি গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয় ওর তার সহকর্মী স্কটল্যান্ডের জন স্নেল কর্তৃক চালু হওয়া বৃত্তি প্রাপ্ত প্রথম ছাত্র ছিলেন। এই গ্লাসগো বিশ্ববিদ্যালয়েই অধ্যাপনাকালীন সময়ে তিনি "The Theory of Moral Sentiments" রচনা করেন। পরবরতী জীবনে তিনি সমগ্র ইউরোপ পরিভ্রমণ করেন এবং এসময়ে তিনি তৎকালীন সময়ের বুদ্ধিজীবী নেতাদের সান্নিধ্য লাভ করেন। স্মিথ তার নিজের সময়ে বিতর্কিত ছিলেন। তার সাধারণ লিখন পদ্ধতি ও শৈলীর কারণে তিনি প্রায়ই উইলিয়াম হোগার্থ ও জোনাথন সুইফট কর্তৃক সমালোচিত হয়েছেন। তবে, ২০০৫ সালে অ্যাডাম স্মিথ রচিত "The Wealth of Nations" বইটি সর্বকালের সেরা ১০০ স্কটিশ বইয়ের তালিকায় স্থান পায়। বলা হয়ে থাকে,সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মার্গারেট থ্যাচার স্মিথের লিখা এই বই সর্বদা হাত ব্যাগে বহন করতেন। প্রাথমিক জীবন এডামের জন্ম ফিফের কিরক্যালডি নামক স্থানে। তার বাবার নামও ছিল এডাম স্মিথ যিনি স্কটিশ সিনেটের একজন লেখক উকিল এবং অভিশংসক ছিলেন। এছাড়াও তিনি কিরক্যালডির শুল্ক বিভাগের নিয়ামক ছিলেন। ১৭২০সালে তিনি মার্গারেট ডগলাসকে বিবাহ করেন যে জমিদার রবার্ট ডগলাসের কন্যা ছিলেন। তার বয়স যখন ২ মাস তখন তার বাবা মারা যান তার মা কে রেখে। তার ধর্ম শিক্ষা হয় কিরক্যালডির চার্চ অফ স্কটল্যান্ডে ৫ই জুন ১৭২৩ সালে এবং এই সালকেই সবসময় তার জন্মসাল হিসেবে মনে করা হয়। তার জীবনীর লেখক স্কটিস সাংবাদিক জন রে এর কাছ থেকে জানা যায় তাকে শৈশবে একবার বেদুইনের দল ধরে নিয়ে যায় এবং পরে অনেক খোঁজা-খুঁজির পর তাকে পাওয়া যায়। স্মিথ তার মায়ের সাথে অনেক ঘনিষ্ঠ ছিলেন, এবং তিনিই স্মিথের পড়ালেখা সম্পর্কিত উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে উৎসাহ দেন। ১৭২৯ থেকে ১৭৩৭ সাল পর্যন্ত স্মিথ কিরক্যাল্ডির বার্গ স্কুলে ভর্তি হন যাকে জন রে "স্কটল্যান্ডের তৎকালীন সর্বোত্তম স্কুলগুলোর একটি" বলেছেন, সেখানে তিনি ল্যাটিন, গণিত, ইতিহাস এবং লেখা চর্চা করেন। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:১৭২৩-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৭৯০-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:অর্থশাস্ত্রের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:১৮শ শতাব্দীর দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:১৮শ শতাব্দীর অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:আলোকিত যুগ বিষয়শ্রেণী:পুঁজিবাদ বিষয়শ্রেণী:রয়েল সোসাইটির সভ্য বিষয়শ্রেণী:রয়েল সোসাইটি অব এডিনবার্গের সভ্য বিষয়শ্রেণী:স্কটল্যান্ডীয় দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:স্কটল্যান্ডীয় পণ্ডিত ও শিক্ষায়তনিক বিষয়শ্রেণী:সামাজিক দার্শনিক
কার্ল মার্ক্স্
https://bn.wikipedia.org/wiki/কার্ল_মার্ক্স্
REDIRECT কার্ল মার্ক্স
ডেভিড রিকার্ডো
https://bn.wikipedia.org/wiki/ডেভিড_রিকার্ডো
ডেভিড রিকার্ডো (; এপ্রিল ১৮, ১৭৭২-সেপ্টেম্বর ১১, ১৮২৩) ছিলেন ইংরেজ অর্থনীতিবিদ এবং রাজনীতিবিদ। তিনি তার থিওরি অফ রেন্ট-এর জন্য বিখ্যাত। থমাস ম্যালথাস, অ্যাডাম স্মিথ ও জেমস মিলের পাশাপাশি রিকার্ডো ধ্রুপদী অর্থনীতিবিদদের মধ্যে অন্যতম।http://www.policonomics.com/david-ricardo/ প্রারম্ভিক জীবন রিকার্ডো ইংল্যান্ডের লন্ডনে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি তার জন্মের কিছুদিন পূর্বে ওলন্দাজ প্রজাতন্ত্র থেকে আসা একটি পর্তুগিজ বংশোদ্ভূত সেপার্ডিক ইহুদি পরিবারের ১৭ সন্তানের তৃতীয়। তার পিতা আব্রাহাম রিকার্ডো ছিলেন একজন সফল স্টকব্রোকার। রিকার্ডো ১৪ বছর বয়সে তার পিতার সাথে কাজ শুরু করেন। ২১ বছর বয়সে রিকার্ডো প্রিসিলা অ্যান উইলকিনসনকে নিয়ে পালিয়ে যান এবং তার পিতার ইচ্ছার বিরুদ্ধে ইউনিটারিয়ান বিশ্বাসী হয়ে ওঠেন।Francisco Solano Constancio, Paul Henri Alcide Fonteyraud. 1847. Œuvres complètes de David Ricardo, Guillaumin, (pp. v–xlviii): A part sa conversion au Christianisme et son mariage avec une femme qu'il eut l'audace grande d'aimer malgré les ordres de son père এই ধর্মীয় পার্থক্যের কারণে তাদের পরিবারের মধ্যে তফাৎ দেখা দেয়, এবং এই স্বাধীনভাবে কোন অবস্থানে যাওয়ার চেষ্টা করেন।Ricardo, David. 1919. Principles of Political Economy and Taxation. G. Bell, p. lix: "by reason of a religious difference with his father, to adopt a position of independence at a time when he should have been undergoing that academic training" তার পিতা তাকে ত্যাজ্য করেন এবং তার মা তার সাথে আর কখনো কথা বলেন নি। মৃত্যু অবসরের দশ বছর পর এবং সংসদের যোগ দেওয়ার চার বছর পরে রিকার্ডো কানে সংক্রমণে মারা যান। এই সংক্রমণ তার মস্তিস্কে ছড়িয়ে পড়েছিল। তার বয়স হয়েছিল ৫১ বছর। তাকে হার্ডেনহুইশের সেন্ট নিকোলাস গির্জায় সমাহিত করা হয়। মৃত্যুকালে তার সম্পদের পরিমাণ ছিল প্রায় ৬০০,০০০ পাউন্ড। আরও দেখুন ধ্রুপদী অর্থনীতি তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জী Hollander, Samuel (1979). The Economics of David Ricardo. University of Toronto Press. G. de Vivo (1987). "Ricardo, David," The New Palgrave: A Dictionary of Economics, v. 4, pp. 183–98 Samuelson, P. A. (2001). "Ricardo, David (1772–1823)," International Encyclopedia of the Social & Behavioral Sciences, pp. 13330–34. Abstract. Éric Pichet, David RICARDO, le premier théoricien de l'économie, Les éditions du siècle, 2004* বহিঃসংযোগ Biography at New School University Biography at EH.Net Encyclopedia of Economic History The Works of David Ricardo (McCulloch edition 1888) at the Online Library of Liberty The Works and Correspondence of David Ricardo (Sraffa edition) 11 vols at the Online Library of Liberty Timeline of the Life of David Ricardo (1772–1823) at the Online Library of Liberty On the Principles of Political Economy and Taxation, by David Ricardo. Complete, fully searchable text at the Library of Economics and Liberty. Ricardo on Value: the Three Chapter Ones. A presentation tracing the changes in the Principles' (University of Southampton). বিষয়শ্রেণী:১৭৭২-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৮২৩-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:১৯শ শতাব্দীর অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:১৯শ শতাব্দীর ইংরেজ লেখক বিষয়শ্রেণী:ধ্রুপদী অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ ইহুদি বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ অর্থনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ রাজনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:পর্তুগিজ-ইহুদি বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:ইহুদি বিজ্ঞানী
জর্জ অরওয়েল
https://bn.wikipedia.org/wiki/জর্জ_অরওয়েল
এরিক আর্থার ব্লেয়ার (জুন ২৫, ১৯০৩ - জানুয়ারি ২১, ১৯৫০) একজন কালোত্তীর্ণ ইংরেজ সাহিত্যিক ও রাজনৈতিক লেখক। অবিভক্ত ভারতের বাংলা প্রদেশের মতিহারিতে জন্ম হয়েছিল তার। বিশ্ব সাহিত্য অঙ্গনে তিনি জর্জ অরওয়েল ছদ্মনামে সমধিক পরিচিত। তার দুটি উপন্যাস - এনিমেল ফার্ম ও নাইন্টিন এইটি-ফোর্‌ - বিংশ শতাব্দীর সর্বশ্রেষ্ঠ গ্রন্থের তালিকায় স্থান পেয়েছে। তিনি আজীবন স্বৈরাচার ও একদলীয় মতবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। রিচার্ড ওয়ামেসলে ব্লেয়ার ও ইদা মাবেল লিমুজিন দম্পতির একমাত্র সন্তান অরওয়েল মাত্র ৪৬ বছর বয়সে যক্ষ্মারোগে মৃত্যুবরণ করেন। জীবন শৈশব ও কৈশোর এরিক আর্থার ব্লেয়ার ১৯০৩ সালের ২৫ জুন ব্রিটিশ ভারতের বাংলার মতিহারিতে জন্মগ্রহণ একটি সুখী 'নিম্ন-উচ্চ-মধ্যবিত্ত' পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার প্রপিতামহ চার্লস ব্লেয়ার ডরসেটের জ্যামাইকান প্ল্যান্টেশনের অনুপস্থিত মালিক ছিলেন। অরওয়েলের পিতা ছিলেন রিচার্ড ওয়ালমেসলে ব্লেয়ার, যিনি ভারতীয় সিভিল সার্ভিসের আফিম বিভাগে সাব-ডেপুটি আফিম এজেন্ট হিসেবে কাজ করতেন, চীনে বিক্রির জন্য আফিম উৎপাদন ও মজুত করার তত্ত্বাবধান করতেন। তার মা, ইডা মেবেল ব্লেয়ার (নি লিমুজিন), বার্মার মৌলমেইনে বেড়ে ওঠেন। এরিকের দুই বোন: মার্জোরি, পাঁচ বছরের বড়; এবং এভ্রিল, পাঁচ বছরের ছোট। এরিক যখন এক বছর বয়সে, তার মা তাকে এবং মার্জোরিকে ইংল্যান্ডে নিয়ে যান। এরিক তার মা এবং বোনদের সাথে বেড়ে ওঠেন এবং ১৯০৭ সালের মাঝামাঝি একবার ছাড়া, তিনি ১৯১২ সাল পর্যন্ত তার বাবাকে দেখেন নি। পাঁচ বছর বয়সী, এরিককে হেনলি-অন-টেমসের একটি কনভেন্ট স্কুলে ডে-বয় হিসাবে পাঠানো হয়েছিল। তার মা তাকে পাবলিক স্কুলে পড়াতে চেয়েছিলেন, কিন্তু তার পরিবার ফি বহন করতে সক্ষম হয় নি। তার মামা চার্লস লিমুজিনের মাধ্যমে, ব্লেয়ার সেন্ট সাইপ্রিয়ানস স্কুল, ইস্টবোর্ন, ইস্ট সাসেক্সে বৃত্তি লাভ করেন। ১৯১১ সালের সেপ্টেম্বরে এসে তিনি পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য স্কুলে থাকেন, শুধুমাত্র স্কুল ছুটির সময় বাড়িতে ফিরতেন। যদিও তিনি হ্রাসকৃত ফি সম্পর্কে কিছুই জানতেন না, তবে তিনি "শীঘ্রই বুজতে পারলেন যে তিনি একজন দরিদ্র ঘর থেকে এসেছেন। উল্লেখযোগ্য বইসমূহ জর্জ অরওয়েল বিভিন্ন পত্র-পত্রিকা ও সাময়িকীতে লেখালেখি থেকে শুরু করে উপন্যাস, প্রবন্ধ, ছোটগল্প, কবিতা রচনা করেছেন। উপন্যাসসমূহ বার্মিজ ডেজ (১৯৩৪) এ ক্লার্জিম্যানস ডটার (১৯৩৫) কিপ দ্য এসপিডিস্ট্রা ফ্লাইং (১৯৩৬) কামিং আপ ফর এয়ার (১৯৩৯) অ্যানিম্যাল ফার্ম (১৯৪৫) নাইন্টিন এইটি-ফোর (১৯৪৯) প্রবন্ধসমূহ ডাউন এন্ড আউট ইন প্যারিস এন্ড লন্ডন (১৯৩৩) দ্য রোড টু উইগান পিয়ের (১৯৩৭) হোমেজ টু ক্যাটালোনিয়া (১৯৩৮)‌ তবে তার বেশিরভাগ লেখাই ছিল সংবাদপত্রের জন্য লেখা সভ্যতা ও রাজনৈতিক সমালোচনামূলক নিবন্ধ। আরও দেখুন https://bn.wikiquote.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9C_%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%B2 তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:১৯০৩-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৯৫০-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ সাহিত্যিক বিষয়শ্রেণী:ধর্মের সমালোচক বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর প্রাবন্ধিক বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর ইংরেজ ঔপন্যাসিক বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ সমাজতাত্ত্বিক বিষয়শ্রেণী:ঔপনিবেশিক ভারতে ব্রিটিশ ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর নাস্তিক বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর ইংরেজ ইতিহাসবিদ বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর ইংরেজ কবি বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর ছদ্মনামধারী লেখক বিষয়শ্রেণী:নাস্তিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:ব্রিটিশ সমাজতান্ত্রিক বিরোধী বিষয়শ্রেণী:ব্রিটিশ হোম গার্ডের সৈনিক বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ নাস্তিক বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ প্রাবন্ধিক বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ পুরুষ সাংবাদিক বিষয়শ্রেণী:ফরাসি বংশোদ্ভূত ইংরেজ ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:মুক্তচিন্তার লেখক বিষয়শ্রেণী:বিহারের সাংবাদিক বিষয়শ্রেণী:আধুনিকতাবাদী লেখক বিষয়শ্রেণী:সংস্কৃতির দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:শিক্ষার দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:ইতিহাসের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:ভাষার দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:সাহিত্যের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:যুদ্ধের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:রাজনৈতিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:সামাজিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক বিষয়শ্রেণী:সাম্যবাদ সম্পর্কে লেখক বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ দিনলিপিকার বিষয়শ্রেণী:ব্রিটিশ অনুসন্ধানী সাংবাদিক
কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের তালিকা
https://bn.wikipedia.org/wiki/কম্পিউটার_বিজ্ঞানীদের_তালিকা
__NOTOC__ থাম্ব|জেমস গোসলিং কম্পিউটার বিজ্ঞানীদের মধ্যে অন্যতম আ আলোন্‌জো চার্চ আলফ্রেড আহো আদি শামির উ উলাহ্‌-ইয়োহান ডাল এ এট্‌সখার ডেইক্‌স্ট্রা এডগার কড এডা লাভলেস এরিক ডিমাইন ক কনরাড ৎসুজে ক্লদ শ্যানন কার্ভার মিড কেনেথ আইভার্সন কেন টম্পসন ক্রিস্টেন নিগার্ড গ গ্রেস হপার গর্ডন বেল চ চার্লস ব্যাবেজ জ জন ককি জন টুকি জন ভন নিউম্যান জন ভিনসেন্ট আটানসফ জিন আম্‌ডাল জেমস কুলি জন বাকাস জন হেনেসি জেমস গসলিং ট টোনি হোর ড ডনাল্ড কানুথ ডেভিড হুইলার ডেভিড প্যাটার্সন ডেনিস রিচি ন নিকলাউস ভির্ট প পিটার নরভিগ ফ ফ্রেড ব্রুক্‌স ব বাটলার ল্যাম্পসন বিয়ারনে স্ট্রোভস্ট্রুপ ভ ভিন্টন সার্ফ ম মরিস উইল্ক্‌স মাইকেল স্টোনব্রেকার মারভিন মিন্‌স্কি র রন রিভেস্ট রবার্ট কান রিচার্ড হ্যামিং ল লিন কন্‌ওয়ে লেনার্ড এডলম্যান লিনুস তোরভাল্দ্‌স স স্টিভ উয়োজনিয়াক হ হুইটফিল্ড ডিফি বিষয়শ্রেণী:কম্পিউটার বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:পেশা অনুযায়ী ব্যক্তিদের তালিকা
উলাহ্‌-ইয়োহান ডাল
https://bn.wikipedia.org/wiki/উলাহ্‌-ইয়োহান_ডাল
উলাহ্‌-ইয়োহান ডাল (১২ অক্টোবর ১৯৩১ - ২৯ জুন ২০০২) ছিলেন একজন নরওয়েজীয় কম্পিউটার বিজ্ঞানী, যাকে ক্রিস্টেন নাইগার্ড-এর সাথে যৌথ ভাবে সিমুলা এবং অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং-এর জনক হিসাবে বিবেচনা করা হয়। জীবনী ডাল ১৯৩১ সালে নরওয়ের মানডাল শহরে জন্মগ্রহণ করেন। তাকে নরওয়ের অন্যতম সেরা কম্পিউটার বিজ্ঞানী হিসাবে বিবেচনা করা হয়। তিনি ক্রিস্টেন নাইগার্ড-এর সাথে যৌথ ভাবে ২০০১ সালে টুরিং পুরস্কার এবং ২০০২ সালে আইইইই জন ভন ন্যুম্যান পদক লাভ করেন।Recipients IEEE John von Neumann Medal and was named Commander of the Royal Norwegian Order of St. Olav in 2000.Page of tribute প্রাথমিক গবেষণা-পত্রাবলী Multiple index countings on the Ferranti Mercury computer / by O.-J. Dahl. Oslo: Norwegian Defence Research Establishment, 1957. Programmer's handbook for the Ferranti Mercury Computer, Frederic at the Norwegian Defense Research Establishment / By O.-J. Dahl, and Jan V. Garwick. – 2nd ed., Kjeller: Norwegian Defence Research Establishment, 1958. Automatisk kodning: et prosjekt ved Forsvarets forskningsinstitutt. Simscript implementation / by Vic Bell and Ole-Johan Dahl. Oslo: Norwegian Computing Center, 1963. Basic concepts of SIMULA: an ALGOL based simulation language / by Ole-Johan Dahl and Kristen Nygaard. Oslo: Norsk Regnesentral, [1965?]. SIMULA: a language for programming and description of discrete event systems : introduction and user's manual. Oslo: Norsk Regnesentral, 1965. Discrete event simulation languages: lectures delivered at the NATO summer school, Villard-de-Lans, September 1966 / by Ole-Johan Dahl. Oslo: Norsk Regnesentral/Norwegian Computing Center, 1966. SIMULA: an ALGOL based simulation language / by Ole-Johan Dahl and Kristen Nygaard. Oslo: Norsk Regnesentral, 1966. Simula: an ALGOL-based simulation language / Ole-Johan Dahl and Kristen Nygaard. New York: Association for Computing Machinery, 1966. I: Communications of the ACM; 9(1966). Class and subclass declarations / Ole-Johan Dahl and Kristen Nygaard. Amsterdam: North-Holland, c1968. I: Simulation programming languages: proceedings of the IFIP working conference on simulation programming languages, Oslo, May 1967 / O.-J. Dahl, conference chairman; organized by IFIP Technical Committee 2, programming languages; edited by J.N. Buxton. Discrete event simulation languages / Ole-Johan Dahl. London: Academic Press, 1968. (Programming languages : NATO Advanced Study Institute / edited by G. Genuys.) SIMULA 67: common base language / by Ole-Johan Dahl, Bjørn Myhrhaug and Kristen Nygaard. Oslo: Norsk Regnesentral, 1968. (Publication S / Norwegian Computing Center; 2) Rev. 1970: Common base language (Publ.; 22). তথ্যসূত্র অন্যান্য উৎস From Object-Orientation to Formal Methods: Essays in Memory of Ole-Johan Dahl, Olaf Owe, Stein Krogdahl and Tom Lyche (eds.), Springer, Lecture Notes in Computer Science, Volume 2635, 2004. . . Pioneer who Prepared the Ground for Road to Java, Jonathan Bowen. The Times Higher Education Supplement, 1677:34, 4 February 2005. বহিঃসংযোগ ব্যক্তিগত তথ্য। তথ্যসূত্র। বিষয়শ্রেণী:নরওয়েজীয় কম্পিউটার বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:১৯৩১-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:২০০২-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:টুরিং পুরস্কার বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
জন টুকি
https://bn.wikipedia.org/wiki/জন_টুকি
জন ওয়াইল্ডার টুকি (১৬ই জুন, ১৯১৫ - ২৬শে জুলাই, ২০০০) একজন মার্কিন পরিসংখ্যানবিদ। তিনি নিউ বেডফোর্ড, ম্যাসাচুসেটস-এ জন্মগ্রহণ করেন। সাধারণত ১৯৫৮ সালে 'বিট' শব্দটি চালু করার জন্য কৃতিত্ব দেওয়া হয়। জীবনী টুকি ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রসায়নে ১৯৩৬ সালে ব্যাচেলর অব আর্টস এবং ১৯৩৭ সালে মাস্টার অব সায়েন্স ডিগ্রী লাভ করেন। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিতে পিএইচ ডি অর্জন করেন। পুরস্কার ও সম্মাননা ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স (১৯৭৩) আইইইই মেডেল অব অনার (১৯৮২) তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:১৯১৫-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:ব্রাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:মার্কিন পরিসংখ্যানবিদ বিষয়শ্রেণী:মার্কিন জাতীয় বিজ্ঞান পদকপ্রাপ্ত বিষয়শ্রেণী:এর্ডশ নম্বর ২ বিষয়শ্রেণী:প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:২০০০-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য বিষয়শ্রেণী:আইইইই মেডেল অব অনার বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য বিষয়শ্রেণী:ন্যাশনাল মেডেল অফ সাইন্স বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:ম্যাসাচুসেট্‌সের ব্যক্তি
আলোন্‌জো চার্চ
https://bn.wikipedia.org/wiki/আলোন্‌জো_চার্চ
থাম্ব|আলোন্‌জো চার্চ আলোন্‌জো চার্চ (জুন ১৮, ১৯০৩ – আগস্ট ১১, ১৯৯৫) ছিলেন একজন মার্কিন গণিতবিদ এবং যুক্তিবিদ। তত্ত্বীয় কম্পিউটার বিজ্ঞানকে শক্ত ভিত্তির উপর দাঁড় করানোর পিছনে তার উল্লেখযোগ্য অবদান রয়েছে। অ্যালান টুরিংয়ের পাশাপাশি চার্চকে কম্পিউটার বিজ্ঞানের অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি ওয়াশিংটন, ডিসি তে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ১৯২৪ সালে ব্যাচেলর ডিগ্রী এবং ১৯২৭ সালে ওসওয়াল্ড ভেবলেন এর তত্ত্বাবধানে পিএইচ ডি ডিগ্রী অর্জন করেন। গটিংগেনের গেয়র্গ আউগুস্ট বিশ্ববিদ্যালয়-এ পোস্টডক করার পর তিনি ১৯২৯-১৯৬৭ প্রিন্সটনে পড়ান এবং ১৯৬৭-১৯৯০ পড়ান ইউনিভার্সিটি অফ ক্যালিফোর্নিয়া অ্যাট লস অ্যাঞ্জেলেস-এ। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:১৯০৩-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৯৯৫-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:শহর অনুযায়ী গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়, লস অ্যাঞ্জেলসের শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন দার্শনিক
জন বাকাস
https://bn.wikipedia.org/wiki/জন_বাকাস
জন বাকাস(জন্ম: ৩ ডিসেম্বর, ১৯২৪ - মৃত্যু: ১৭ মার্চ, ২০০৭) হলেন একজন মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী। তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন সর্বপ্রথম উচ্চ-পর্যায় প্রোগ্রামিং ভাষা ফোরট্রান, বাকাস-নর আকার(বিএনএফ, যা সিনট্যাক্স এর সংজ্ঞায় প্রায় সার্বজনীনভাবে ব্যবহৃত চিহ্ন-পদ্ধতি), এবং ফাংশান-পর্যায় প্রোগ্রামিং ধারণা উদ্ভাবণ করবার জন্য। তিনি ১৯৭৭ সালে এই অসামান্য সব অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ এসিএম টুরিং পুরস্কার অর্জন করেন। বাকাস'র টুরিং বিবৃতিটি এরকম: ফোরট্রান এর উপর কাজের মাধ্যমে তিনি উচ্চ-পর্যায় প্রোগ্রামিং ব্যবস্থা তৈরিতে যে সুগভীর, প্রভাবশালী এবং অমর অবদান রেখেছেন এবং পোগ্রামিং ভাষার প্রকাশের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত নিয়মতান্ত্রিক পদ্ধতির উপর তাঁর অসাধারণ প্রকাশনাবলীর স্বীকৃতিস্বরূপ। জন্ম ও শিক্ষাজীবন বাকাস পেন্সিলভানিয়ার ফিলাডেলফিয়াতে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ১৯৪৯ সালে কলাম্বিয়া ইউনিভার্সিটি থেকে গণিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন এবং ১৯৫০ সালে আইবিএম এ যোগদান করেন। সম্মাননা ও পুরস্কার ১৯৭৭ সালের এসিএম প্রদত্ত টুরিং পুরস্কার বিজয়ী। তথ্যসূত্র বহি:সংযোগ বিষয়শ্রেণী:মার্কিন কম্পিউটার বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:টুরিং পুরস্কার বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:১৯২৪-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:২০০৭-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:ন্যাশনাল মেডেল অফ সাইন্স বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:চার্লস স্টার্ক ড্র্যাপার প্রাইজ বিজয়ী বিষয়শ্রেণী:আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:২১শ শতাব্দীর মার্কিন গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমির সদস্য বিষয়শ্রেণী:দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের মার্কিন সেনা কর্মকর্তা বিষয়শ্রেণী:ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
চার্লস ব্যাবেজ
https://bn.wikipedia.org/wiki/চার্লস_ব্যাবেজ
right|thumb|চার্লস্‌ ব্যাবেজের ছবি চার্লস ব্যাবেজ () (২৬শে ডিসেম্বর, ১৭৯১-১৮ই অক্টোবর, ১৮৭১) একজন ইংরেজ যন্ত্র প্রকৌশলী, গণিতবিদ, আবিষ্কারক ও দার্শনিক। তাকে আধুনিক কম্পিউটারের জনক মনে করা করা হয়। তিনি ডিফারেন্স ইঞ্জিন ও অ্যানালিটিক্যাল ইঞ্জিন নামে দুইটি যান্ত্রিক কম্পিউটার তৈরি করেছিলেন। তার তৈরি অ্যানালিটিকাল ইঞ্জিন যান্ত্রিকভাবে গাণিতিক কাজ সম্পাদন করতে পারত এবং এই ইঞ্জিনের বিভিন্ন বৈশিষ্ট্য আজকের কম্পিউটারের ডিজাইনে এখনো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়৷ অর্থায়নের অভাবে ব্যাবেজ তার এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করতে পারেননি। শৈশব চার্লসের জন্মস্থান নিয়ে অনেক বিতর্ক আছে, অক্সফোর্ড ডিকশনারি অফ বায়োগ্রাফির তথ্য অনুযায়ী, তিনি সম্ভবত ৪৪ ক্রসবি রো, ওয়ালওয়ার্থ রোড,লন্ডন,ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। লারকম স্ট্রিট এবং ওয়ালওয়ার্থ রোডের জংশনে একটি নীল ফলক এই ঘটনা স্মরণ করায়। তার জন্ম তারিখটি ‘দ্যা টাইমসে, মৃত্যুর সংবাদে ২৬ ডিসেম্বর ১৭৯২ সাল দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু তারপর তার ভাইপো জানান যে, এক বছর আগে অর্থাৎ চার্লস ১৭৯১ সালে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সেন্ট ম্যারি নিউইংটন, লন্ডনের প্যারিস রেজিস্টারে দেখানো হয়েছে যে, চার্লস ৬ জানুয়ারি ১৭৯১ সালে জন্মগ্রহণ করেন। বেঞ্জামিন ব্যাবেজ এবং বেটসি প্লামলি টিপের চার সন্তানের মধ্যে চার্লস ছিলেন একজন।তার স্বাস্থ্যের কারণে তিনি বেশীরভাগ সময় ব্যক্তিগত মাস্টারমশাই এর কাছে পড়াশুনে করতে হয় এবং তা উচ্চ পর্যায়ের স্তরে পৌঁছান যা কিনা ক্যামব্রিজ কর্তৃক গ্রহণযোগ্য ছিল।১৮১০ সালে,অক্টোবর তিনি টকেমব্রিজের ট্রিনিটি কলেজে পরতে আসেন। তিনি ইতিমধ্যে সমসাময়িক গণিতের কিছু অংশে স্ব-শিক্ষিত ছিলেন; তিনি রবার্ট উডহাউস,জোসেফ লউইস লেগারজন এবং মারিয়া এগনেসি লেখা পড়েছিলেন।ফলস্বরূপ,বিশ্ববিদ্যালয়ে উপলব্ধ মান গাণিতিক নির্দেশনায় তিনি হতাশ হন। 2004 সালে চার্লস,জন হার্শেল,জর্জ পিকক এবং আরও কয়েকজন বন্ধু আনালিটিকাল সোসাইটি গঠন করেন;তিনি এডওয়ার্ড র‍য়ানের কাছের ব্যক্তি ছিলেন।১৮১২ সালে চার্লস পিটারহাউস,কেমব্রিজে স্থানান্তরিত হন।তিনি সেখানে শীর্ষ গণিতবিদ ছিলেন,কিন্তু সম্মানসূচক সংখ্যা দিয়ে স্নাতক হয়নি।১৮১৪ সালে পরীক্ষা ছাড়াই তিনি স্নাতক হন। পরিবার ২৫ জুলাই ১৮১৪, চার্লস জর্জিয়া হোয়াইটমোরের সাথে সেন্ট মাইকেল চার্চ টিনব্রিজ,ডেভুনে বিয়ে করেন।Wilkes (2002) p.355 তাদের আটটি সন্তান ছিল Also see কিন্তু মাত্র চারটি - বেঞ্জামিন হার্সেল, জর্জিয়ানা হোয়াইটমোর, ডগল্ড ব্রোমহেড এবং হেনরি প্রিভোস্ট - শৈশবে বেঁচে ছিলেন। তার স্ত্রী জর্জিয়া ১ সেপ্টেম্বর ১৮২৫ সালে, ওয়ারসেস্টারে, একই বছর তার পিতা, দ্বিতীয় পুত্র (চার্লস নামেও পরিচিত) এবং তার নবজাত পুত্র আলেকজান্ডার মারা যান। বেঞ্জামিন হারশেল ব্যাবেজ (১৮১৫-১৮৭৮) চার্লস ভাইটমোর ব্যাবেজ (১৮১৭-১৮২৭) জর্জিয়ানা হোয়াইটমোর ব্যাবেজ (১৮১৮- ??) এডওয়ার্ড স্টুয়ার্ট ব্যাবেজ (১৮১৯-১৮২১) ফ্রান্সিস মুর ব্যাবেজ (১৮২১- ??) ডগল্ড ব্রোমহেড (ব্রোমহেল্ড?)ব্যাবেজ (১৮২৩-১৯০১) (মেজ-জেন) হেনরি প্রিভস্ট ব্যাবেজ (১৮২৪-১৯১৮) আলেকজান্ডার ফোর্বস ব্যাবেজ (১৮২৭-১৮২৭) কর্মজীবন ১৮২৮ সালে তিনি লুকাসিয়ান প্রফেসর হিসেবে নিযুক্ত হন এবং ১৮৩৯ সাল পর্যন্ত এ পদে আসীন ছিলেন।তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনা করতে পছন্দ করতেন না ,তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকে আরও সংহত দেখতে চেয়েছিলেন,বিশেষ করে গবেষণা ও বৃহত্তর পাঠ্যক্রম আরও বেশি করে নজর দেওয়া।ছয় বছর ধরে রিচার্ড জোনসের সাথে তার এই নিয়ে বিতর্ক চলে। তিনি কখনও অধ্যাপনা করেনি।এই সময়ের তিনি রাজনীতিতে প্রবেশ করার চেষ্টা করেছিলেন।তিনি বেরা অফ ফিনসবারীর প্রার্থী হিসেবে দুবার সংসদে দাঁড়িয়েছিলেন। ১৮৩২ সালে পাঁচজন প্রার্থীর মধ্যে তিনি তৃতীয় স্থান পান।১৮৩৪ সালে তিনি চারজনের মধ্যে চতুর্থ স্থান অর্জন করেন।১৮৩৯ সালের শেষে তিনি লুকাসিয়ান অধ্যাপক হিসাবে পদত্যাগ করেন।ভ্যাভেলের সাথে কেমব্রিজের সংগ্রাম থেকেও দূরে চলে যান।গণিত ও গুনতি এবং আন্তর্জাতিক পরিচিতিগুলির উপর তিনি আরও মনোযোগী হয়ে ওঠেন।তিনি ১৮২২ সালে ডিফারেন্স ইঞ্জিন আবিষ্কার করেন এবং তৈরির বর্ণনা লিখে রেখেছিলেন। পরবর্তীতে ১৯৯১ সালে তার বর্ণনা অনুসারে একটি ইঞ্জিন তৈরি করা হয় এবং দেখা যায় সেটি সঠিকভাবে কাজ করছে। অন্তকাল thumb|upright|চার্লস চার্লস ব্যাবেজের মস্তিষ্ক প্রদর্শন করা হয় দ্যা সায়েন্স মিউজিয়ামে (লন্ডন)। ১,ডরসেট স্ট্রিট, মারলেবনে, তিনি ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে কাজ করেন এবং থাকতেন;১৮ অক্টোবর ১৮৭১ সালে,৭৯ বছর বয়সে এখানেই চার্লস মারা যান।তাকে লন্ডনের কেন্সাল গ্রিন কবরস্থানে সমাহিত করা হয়েছিল।তিনি নাইটহুড এবং ব্যারনেটের খেতাব উভয়ই প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। আরও পড়ুন (Reissued by Cambridge University Press 2009, .) (The LOCOMAT site contains a reconstruction of this table.) তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:১৭৯১-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৮৭১-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:ব্রিটিশ গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:ব্রিটিশ কম্পিউটার বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য বিষয়শ্রেণী:ট্রিনিটি কলেজ, কেমব্রিজের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:ইংরেজ কম্পিউটার বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:রাজোচিত জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থার সভ্য বিষয়শ্রেণী:রয়েল সোসাইটি অব এডিনবার্গের সভ্য বিষয়শ্রেণী:রয়েল সোসাইটির সভ্য বিষয়শ্রেণী:শিল্প বিপ্লবের ব্যক্তিত্ব
ক্রিস্টেন নিগার্ড
https://bn.wikipedia.org/wiki/ক্রিস্টেন_নিগার্ড
ক্রিস্টেন নিগার্ড (আগস্ট ২৭, ১৯২৬ - আগস্ট ২, ২০০২) ছিলেন নরওয়েজীয় গণিতবিদ এবং কম্পিউটার প্রোগ্রামিং ভাষা মুঘল এবং রাজনীতিবিদ। অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং নিগার্ড ১৯৫৬ সালে অসলো বিশ্ববিদ্যালয় থেকে গণিত বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি লাভ করেন। নিগার্ড ১৯৬০ এর দশকে আন্তর্জাতিকভাবে উলাহ্‌-ইয়োহান ডালের সাথে অবজেক্ট ওরিয়েন্টেড প্রোগ্রামিং ও প্রোগ্রামিং ভাষা সিমুলার সহ-উদ্ভাবক হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেন। নিগার্ড ১৯৪৮ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত নরওয়েজীয় প্রতিরক্ষা গবেষণা প্রতিষ্ঠান-এ পূর্ণ সময়ে কাজ করতেন। তিনি ১৯৪৮ থেকে ১৯৫৪ সালে কম্পিউটিং ও প্রোগ্রামিং এবং ১৯৫২ থেকে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত কার্য গবেষণা বিষয়ের দায়িত্ব পালন করেন। রাজনৈতিক জীবন নিগার্ড নরওয়ের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলেন। ১৯৬০ এর দশকের মাঝামাঝি ও শেষের দিকে তিনি নরওয়ের লিবারেল পার্টির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য এবং দলের কৌশল প্রণয়ন কমিটির প্রধানের দায়িত্ব পালন করেন।. See in particular p. 97. তিনি ১৯৪৯ সালের নরওয়ের সংসদীয় নির্বাচনের প্রার্থী ছিলেন। ১৯৭১ থেকে ২০০১ পর্যন্ত নিগার্ড লেবার পার্টির সদস্য ছিলেন এবং এই দলের গবেষণা নীতি কমিটির সদস্য ছিলেন। ব্যক্তিগত জীবন নিগার্ড ১৯৫১ সালে জোহানা নিগার্ডকে বিয়ে করেন। জোহানা উন্নয়নশীল রাষ্ট্রসমূহের জন্য প্রদত্ত নরওয়েজীয় সহযোগিতা এজেন্সিতে কর্মরত ছিলেন। তাদের তিন সন্তান ও সাত নাতি-নাতনী ছিল। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Kristen Nygaard bibliography Resources on Ole-Johan Dahl, Kristen Nygaard and SIMULA বিষয়শ্রেণী:১৯২৬-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:২০০২-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:অসলো বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক বিষয়শ্রেণী:টুরিং পুরস্কার প্রাপক বিষয়শ্রেণী:নরওয়েজীয় একাডেমি অব সায়েন্সেস অ্যান্ড লেটার্সের সদস্য বিষয়শ্রেণী:নরওয়েজীয় কম্পিউটার বিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:নরওয়েজীয় গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:নরওয়েজীয় রাজনীতিবিদ বিষয়শ্রেণী:প্রোগ্রামিং ভাষা গবেষক বিষয়শ্রেণী:প্রোগ্রামিং ভাষা নকশাকার বিষয়শ্রেণী:টুরিং পুরস্কার বিজয়ী
কম্পিউটার স্থাপত্য
https://bn.wikipedia.org/wiki/কম্পিউটার_স্থাপত্য
alt=|থাম্ব|481x481px|ইউনিকপ্রসেসর সিপিইউ সহ একটি বেসিক কম্পিউটারের ব্লক ডায়াগ্রাম। কালো রেখা দ্বারা উপাত্ত প্রবাহ এবং লাল রেখা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ প্রবাহকে নির্দেশ করা হয়েছে। তীরচিহ্ন দ্বারা প্রবাহের দিক নির্দেশ করা হয়েছে। কম্পিউটার স্থাপত্য () কম্পিউটার সিস্টেমের ধারণাগত গঠন ও কার্যপ্রণালি সংজ্ঞা দেওয়ার বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞান একটি ভবনের স্থাপত্যের মতোই যা দিয়ে তার সার্বিক গঠন, তার বিভিন্ন অংশের কাজ, এবং সে সব অংশকে একত্রিত করার পদ্ধতি হলো এই বিজ্ঞান। এই বিজ্ঞান কম্পিউটার বাস্তবায়নের সাথে সংশ্লিষ্ট কিন্তু তার থেকে মৌলিকভাবে ভিন্ন। স্থাপত্যের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সেই সব বৈশিষ্ট্য যা সফটওয়্যার প্রোগ্রামগুলোর নকশা এবং উন্নয়ন ডিজাইন নিয়ন্ত্রণ করে। অন্যদিকে বাস্তবায়নের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত সেই সব বৈশিষ্ট্য যা দিয়ে আপেক্ষিক ব্যয় ও সিস্টেমের কার্যসম্পাদন নির্বাচিত হয়। উদ্দেশ্য কম্পিউটার স্থাপত্যের প্রধান উদ্দেশ্য হলো এমন একটি কম্পিউটার তৈরি করা যা নির্দিষ্ট ব্যয়ের সীমাবদ্ধতার মধ্যে যত দ্রুত সম্ভব কাজ করতে পারবে। পরে সঙ্গে আরো উদ্দেশ্য যোগ করা হয়েছে। যেমন- অনেকগুলো প্রোগ্রাম একই সাথে চালানো অথবা উচ্চতর ভাষায় লেখা প্রোগ্রামের ক্ষমতার ব্যাপক উন্নতি করা। গঠন কম্পিউটার সিস্টেমের মধ্যে চারটি মূল অংশ থাকে: স্মৃতি, প্রসেসর, আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি এবং তথ্য প্রবেশ ও নির্গমন ব্যবস্থা (ইনপুট-আউটপুট ) . স্মৃতির মধ্যে তথ্য ও প্রোগ্রামগুলো গচ্ছিত রাখা হয়। প্রসেসর হলো সেই অংশ যা দিয়ে সিস্টেমের কাজকে নিয়ন্ত্রণণ করা হয় এবং বিভিন্ন গণনা করা সম্ভব হয়। আনুষঙ্গিক যন্ত্রপাতি দিয়ে ব্যবহারকারীর সাথে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। ইনপুট-আউটপুট সিস্টেম দিয়ে পূর্বে বর্ণিত ঐ অংশগুলোর পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ স্থাপন করা হয়। আরও দেখুন কম্পিউটার হার্ডওয়্যার সফটওয়্যার আর্কিটেকচার তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:কেন্দ্রীয় প্রক্রিয়াজাতকরণ ইউনিট
থ্যালিস
https://bn.wikipedia.org/wiki/থ্যালিস
REDIRECTথেলিস
পিথাগোরাস
https://bn.wikipedia.org/wiki/পিথাগোরাস
সামোসের পিথাগোরাস (, অথবা শুধু পিথাগোরাস; ৫২৭– ৪৯৭ খ্রিস্টপূর্বাব্দ "তার জন্মের তারিখ সঠিকভাবে জানা যায় না। Aristoxenus-এর বক্তব্য সঠিক বলে মেনে নিলে (ap. Porph. V.P. 9) তিনি চল্লিশ বছর বয়সে Polycrates-এর স্বৈরশাসন থেকে বাঁচতে সামোস ত্যাগ করেন, আমরা ধরে নিতে পারি তিনি ৫৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ বা তার কিছু পূর্বে জন্মেছিলেন। যদিও প্রাচীন কালে তার বয়সের বিভিন্ন হিসাব পাওয়া যায়, এ বিষয়ে সবাই একমত যে তিনি দীর্ঘ জীবন লাভ করেছিলেন এবং সম্ভবত ৭৫ থেকে ৮০ বছর বয়সে মারা যান।" William Keith Chambers Guthrie, (1978), A history of Greek philosophy, Volume 1: The earlier Presocratics and the Pythagoreans, page 173. Cambridge University Press) ছিলেন একজন আয়োনীয় গ্রিক দার্শনিক, গণিতবিদ এবং পিথাগোরাসবাদী ভ্রাতৃত্বের জনক যার প্রকৃতি ধর্মীয় হলেও তা এমন সব নীতির উদ্ভব ঘটিয়েছিল যা পরবর্তীতে প্লেটো এবং এরিস্টটলের মত দার্শনিকদের প্রভাবিত করেছে।Pythagoras, এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা তিনি এজিয়ান সাগরের পূর্ব উপকূল অর্থাৎ বর্তমান তুরস্কের কাছাকাছি অবস্থিত সামোস দ্বীপে জন্মেছিলেন। ধারণা করা হয় শৈশবে জ্ঞান অন্বেষণের তাগিদে মিশরসহ বিভিন্ন দেশ ভ্রমণ করেছিলেন। ৫৩০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে ইতালির দক্ষিণাঞ্চলে অবস্থিত গ্রিক কলোনি ক্রোতোনে চলে যান, এবং সেখানে একটি আধ্যাত্মিক ও দার্শনিক ভ্রাতৃত্বমূলক সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেন। তার অনুসারীরা তারই নির্ধারিত বিধি-নিষেধ মেনে চলত এবং তার দার্শনিক তত্ত্বসমূহ শিখতো। এই সম্প্রদায় ক্রোতোনের রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে থাকে যা তাদের নিজেদের জন্য বিপজ্জনক হয়ে দাড়ায়। এক সময় তাদের সভাস্থানগুলো পুড়িয়ে দেয়া হয় এবং পিথাগোরাসকে বাধ্য করা হয় ক্রোতোন ছেড়ে যেতে। ধারণা করা হয় জীবনের শেষ দিনগুলো তিনি দক্ষিণ ইতালিরই আরেক স্থান মেতাপোন্তুমে কাটিয়েছিলেন। পিথাগোরাস কিছু লিখেননি এবং সমসাময়িক কারও রচনাতেও তার সম্পর্কে বিস্তারিত কিছু জানা যায় না। উপরন্তু ১ম খ্রিস্টপূর্বাব্দ থেকে তাকে বেশ অনৈতিহাসিক দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখা হতে থাকে। সে সময় ভাবা হতো পিথাগোরাস একজন স্বর্গীয় সত্তা এবং গ্রিক দর্শনে যা কিছু সত্য (এমনকি প্লেটো এবং এরিস্টটলের অনেক পরিণত চিন্তাধারা) তার সবই তিনি শুরু করেছেন। এই ধারণা প্রতিষ্ঠিত করতে এমনকি কিছু গ্রন্থ পিথাগোরাস ও পিথাগোরাসবাদীদের নামে জাল করা হয়েছিল। তাই তার সম্পর্কে সত্যটা জানার জন্য মোটামুটি নির্ভেজাল এবং প্রাচীনতম প্রমাণগুলোর দিকে তাকাতে হবে কারণ স্পষ্টতই পরবর্তীরা তার ব্যাপারে তথ্য বিকৃতি ঘটিয়েছিল। বর্তমানে পিথাগোরাস প্রধাণত গণিতবিদ ও বিজ্ঞানী হিসেবে পরিচিত হলেও প্রাচীনতম প্রমাণ বলছে, তার সময় বা তার মৃত্যুর দেড় শত বছর পর প্লেটো ও এরিস্টটলের সময়ও তিনি গণিত বা বিজ্ঞানের জন্য বিখ্যাত ছিলেন না। তখন তিনি পরিচিত ছিলেন, প্রথমত মৃত্যুর পর আত্মার পরিণতি বিষয়ে বিশেষজ্ঞ যিনি ভাবতেন আত্মা অমর এবং ধারাবাহিকভাবে তার অনেকগুলো পুনর্জন্ম ঘটে, দ্বিতীয়ত, ধর্মীয় আচারানুষ্ঠান বিষয়ে পণ্ডিত, তৃতীয়ত একজন ঐন্দ্রজালিক যার স্বর্ণের ঊরু আছে এবং যিনি একইসাথে দুই স্থানে থাকতে পারেন এবং চতুর্থত, একটি কঠোর জীবন ব্যবস্থা যাতে খাদ্যাভ্যাসের উপর নিষেধাজ্ঞা এবং আচারানুষ্ঠান পালন ও শক্ত আত্ম-নিয়ন্ত্রয়ণের নির্দেশ আছে তার জনক হিসেবে।Huffman, Carl, "Pythagoras", The Stanford Encyclopedia of Philosophy (Fall 2011 Edition), Edward N. Zalta (ed.) কোনগুলো পিথাগোরাসের কাজ আর কোনগুলো তার উত্তরসূরিদের কাজ তা নির্ধারণ করা বেশ কষ্টকর। তারপরও ধারণা করা হয় পিথাগোরাস বস্তুজগৎ ও সঙ্গীতে সংখ্যার গুরুত্ব ও কার্যকারিতা বিষয়ক তত্ত্বের জনক। অন্যান্য প্রাক-সক্রেটীয় দার্শনিকের মতো তিনিও বিশ্বতত্ত্ব নিয়ে ভেবেছিলেন কিনা এবং আসলেই তাকে গণিতবিদ বলা যায় কিনা এ নিয়ে বিতর্ক আছে। তবে প্রাচীনতম নিদর্শন বলছে, পিথাগোরাস এমন একটি বিশ্বজগতের ধারণা দিয়েছিলেন যা নৈতিক মানদণ্ড এবং সাংখ্যিক সম্পর্কের ভিত্তিতে গঠিত। প্লেটোর মহাজাগতিক পুরাণে যেসব ধারণা পাওয়া যায় তার সাথে এর বেশ মিল আছে। বিভিন্ন সংখ্যার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে তিনি খুব আগ্রহী ছিলেন যার উৎকৃষ্ট উদাহরণ পিথাগোরাসের উপপাদ্য। যার উপর ভিত্তি করে গড়ে উঠেছে গণিতের ত্রিকোণমিতি নামক একটি শাখা।কিন্তু এই উপপাদ্য তিনি প্রমাণ করেছিলেন বলে মনে হয় না। সম্ভবত পিথাগোরীয় দর্শনের উত্তরসূরিরাই এর প্রকৃত প্রতিপাদক। এই উত্তরসূরিরা তাদের গুরুর বিশ্বতত্ত্বকে দিনদিন আরও বৈজ্ঞানিক ও গাণিতিক দিকে নিয়ে গেছে যাদের মধ্যে ফিলোলাউস এবং Archytas উল্লেখযোগ্য। পিথাগোরাস মৃত্যু-পরবর্তী আত্মার অপেক্ষাকৃত আশাবাদী একটি চিত্র দাঁড় করিয়েছিলেন এবং জীবন যাপনের এমন একটি পদ্ধতি প্রদান করেছিলেন যা দৃঢ়তা ও নিয়মানুবর্তিতার কারণে অনেককে আকর্ষণ করতে সমর্থ হয়েছিল। বলা হয়ে থাকে তিনিই প্রথম যে নিজেকে দার্শনিক বা প্রজ্ঞার প্রেমিক হিসেবে দাবি করেছিলেন।Cicero, Tusculan Disputations, 5.3.8–9 = Heraclides Ponticus fr. 88 Wehrli, Diogenes Laërtius 1.12, 8.8, Iamblichus VP 58. Burkert attempted to discredit this ancient tradition, but it has been defended by C.J. De Vogel, Pythagoras and Early Pythagoreanism (1966), pp. 97–102, and C. Riedweg, Pythagoras: His Life, Teaching, And Influence (2005), p. 92. জীবন thumb|পিথাগোরাসের আবক্ষ মূর্তি, ভ্যাটিকান জাদুঘর হিরোডটাস, আইসোক্রেটস এবং আরো অনেক প্রাচীন লেখকেরা একমত যে, পিথাগোরাস পূর্ব এজিয়ান সাগরের গ্রিক দ্বীপ সামোসে জন্মেছিলেন। আমরা এও জানি যে তিনি ম্নেসারকাসের-এর সন্তান ছিলেন।Herodotus, iv. 95, Isocrates, Busiris, 28–9; Later writers called him a Tyrrhenian or Phliasian, and gave Marmacus, or Demaratus, as the name of his father, Diogenes Laërtius, viii. 1; Porphyry, Vit. Pyth. 1, 2; Justin, xx. 4; Pausanias, ii. 13. যিনি একজন রত্ন খোদাইকার অথবা বণিক ছিলেন। পিথিয়ান অ্যাপোলো এবং আরিস্তিপাস-এর সাথে মিলিয়ে তার নাম রাখা হয়েছিল পিথাগোরাস। প্রবাদ আছে, "তিনি পিথিয়ান-এর মতোই সত্যবাদী ছিলেন" তাই পিথিয়ান থেকে তার নামের প্রথম অংশ পিথ পাওয়া যায় আর "বলা" অর্থে পাওয়া যায় আগোর। ইয়ামব্লিকাস-এর গল্প অনুসারে পিথিয়ান দৈববাণী করেছিলেন যে পিথাগোরাসের গর্ভবতী মা অসম্ভব সুন্দর, প্রজ্ঞাবান ও মানুষের জন্য কল্যাণকর একজন সন্তান প্রসব করবে। একটি পরবর্তী সূত্র জানায় যে তার মায়ের নাম ছিল পিথাইস,Apollonius of Tyana ap. Porphyry, Vit. Pyth. 2 তার জন্মবছর সম্পর্কে বলতে গিয়ে আরিস্তোক্সেনাস বলেন, পিথাগোরাস তার ৪০ বছর বয়সে যখন সামোস ছেড়ে যান তখন পলিক্রেটস-এর রাজত্ব, সে হিসাবে তিনি ৫৭০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের দিকে জন্মেছিলেন।Porphyry, Vit. Pyth. 9 স্বভাবতই আদি জীবনীকারগন খুঁজে দেখতে চেয়েছিলেন পিথাগরাসের এহেন প্রজ্ঞার উৎস। যদিও নির্ভরযোগ্য তথ্য তেমন নেই, কিন্তু পিথাগরাসের শিক্ষকদের একটা লম্বা তালিকা পাওয়া যায়। তাদের মধ্যে কেউ পুরাদস্তুর গ্রিক, আবার কেউ পুরাদস্তুর মিশরীয় কিংবা পূর্বদেশীয়। তালিকায় রয়েছেন Creophylus of Samos,Iamblichus, Vit. Pyth. 9 Hermodamas of Samos,Porphyry, Vit. Pyth. 2, Diogenes Laërtius, viii. 2 C. Riedweg, S. Rendall Retrieved 2012-02-08 বায়াস, থেলেস, আনাক্সিম্যান্ডার,Iamblichus, Vit. Pyth. 9; Porphyry, Vit. Pyth. 2 এবং Pherecydes of Syros.Aristoxenus and others in Diogenes Laërtius, i. 118, 119; Cicero, de Div. i. 49। শোনা যায় তিনি Themistoclea নামের এক আধ্যাত্মিক সাধুর কাছে নীতিশাস্ত্রের প্রথম পাঠ নিয়েছিলেন। Mary Ellen Waithe, Ancient women philosophers, 600 B.C.–500 A.D., p. 11 বলা হয়, মিশরীয় দের কাছে তিনি শিখেছিলেন জ্যামিতি, ফনিশিয়ানদের কাছে পাটিগণিত, ক্যালডীয়ানদের কাছে জ্যোতির্বিজ্ঞান, মাগিয়ানদের কাছে শিখেছিলেন ধর্মতত্ত্ব এবং জীবনযাপনের শিল্প।Porphyry, Vit. Pyth. 6 অন্যান্য সকল শিক্ষকদের মধ্যে তার গ্রিক শিক্ষক Pherecydes এর নাম সবচেয়ে বেশি শোনা যায়। Diogenes Laertius প্রদত্ত তথ্য অনুসারে পিথাগোরাস ব্যাপক পরিসরে ভ্রমণ করেছিলেন। জ্ঞান আহরণ আর বিশেষত সূফী দলগুলোর কাছ থেকে ইশ্বরের স্বরূপ সন্ধান এর উদ্দেশ্যে তিনি মিশর, ছাড়াও আরবদেশগুলো, ফোনেশিয়া, Judaea, ব্যাবিলন, ভারতবর্ষ পর্যন্ত ভ্রমণ করেন।Diogenes Laërtius, viii. 2; Porphyry, Vit. Pyth. 11, 12; Iamblichus, Vit. Pyth. 14, etc. প্লুতার্ক তার On Isis and Osiris নামক বইতে জানান, মিশর ভ্রমণ কালে পিথাগোরাস Oenuphis of Heliopolis এর কাছ থেকে মূল্যবান নির্দেশনা পান।Plutarch, On Isis And Osiris, ch. 10. অন্যান্য প্রাচীন লেখকরাও তার মিশর ভ্রমণের কথা উল্লেখ করেছেন।Antiphon. ap. Porphyry, Vit. Pyth. 7; Isocrates, Busiris, 28–9; Cicero, de Finibus, v. 27; Strabo, xiv. মিশরীয় পুরোহিতদের কাছে পিথাগোরাস কতটুকু কী শিখেছিলেন বা আদৌ কিছু শিখেছিলেন কিনা তা বলা কঠিন। যে প্রতীকীবাদ পিথাগোরিয়ানরা আয়ত্ত করেছিলেন তার সাথে মিশরের সুনির্দিষ্ট কোন যোগাযোগ খুঁজে পাওয়া যায় না। যে সব গোপন ধর্মীয় প্রথা পিথাগোরিয়ানগন পালন করতেন সেটা গ্রিসের ধর্মীয় মানসের ভেতরে নিজে নিজেই বিকাশিত হতে পারত, প্রাচীন মিশরীয় ঐন্দ্রজালিকতা সম্পর্কে সম্পূর্ণ অজ্ঞাত থেকেই। যে দর্শন ও প্রতিষ্ঠান সমূহ পিথাগোরাস গড়ে তুলেছিলেন, সেটা সে সময়ের প্রভাবপুষ্ট যে কোন গ্রিক মনীষী সেটা সম্ভব করে তুলতে পারতেন। প্রাচীন গ্রন্থকারগণ পিথাগোরাসের ধর্মীয় এবং নান্দনিক স্বকীয়তার সাথে অর্ফিক কিংবা ক্রিটান রহস্যেরIamblichus, Vit. Pyth. 25; Porphyry, Vit. Pyth. 17; Diogenes Laërtius, viii. 3 কিংবা Delphic oracleAriston. ap. Diogenes Laërtius, viii. 8, 21; Porphyry, Vit. Pyth. 41 সাদৃশ্যের কথা উল্লেখ করে গিয়েছিলেন। অবদান থাম্ব|পিথাগোরাসের উপপাদ্য: কোন একটি সমকোণী ত্রিভুজের অতিভুজের উপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রের ক্ষেত্রফল ঐ ত্রিভুজের অপর দুই বাহুর উপর অঙ্কিত বর্গক্ষেত্রদ্বয়ের ক্ষেত্রফলের সমষ্টির সমান। গণিতে পিথাগোরাসের উপপাদ্য বা পিথাগোরিয়ান থিউরেম হল ইউক্লিডীয় জ্যামিতির অন্তর্ভুক্ত সমকোণী ত্রিভুজের তিনটি বাহু সম্পর্কিত একটি সম্পর্ক। এই উপপাদ্যটি গ্রিক গণিতবিদ পিথাগোরাসের নামানুসারে করা হয়েছে, যাকে ঐতিহ্যগতভাবে এই উপপাদ্যদের আবিষ্কারক ও প্রমাণকারী হিসেবে গণ্য করা হয়। তবে উপপাদ্যটির ধারণা তার সময়ের আগে থেকেই প্রচলিত ছিল তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Pythagoras of Samos, The MacTutor History of Mathematics archive, School of Mathematics and Statistics, University of St Andrews, Scotland Pythagoras and the Pythagoreans, Fragments and Commentary, Arthur Fairbanks Hanover Historical Texts Project, Hanover College Department of History Pythagoras and the Pythagoreans , Department of Mathematics, Texas A&M University Pythagoras and Pythagoreanism, The Catholic Encyclopedia Tetraktys Golden Verses of Pythagoras Pythagoras on Vegetarianism Quotes from primary source historical literature on Pythagoras' view on Vegetarianism, Justice and Kindness Homage to Pythagoras Occult conception of Pythagoreanism Pythagoreanism Web Article 45-minute documentary about Pythagoras Io and Pi – theatrical play on Pythagoras' life The Symbols of Pythagoras at The Sacred Texts online বিষয়শ্রেণী:গ্রিক গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫৮০-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫০০-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:শিক্ষার দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:ধর্ম প্রবর্তক বিষয়শ্রেণী:তপস্বী বিষয়শ্রেণী:পিথাগোরাস বিষয়শ্রেণী:নিরামিষবাদ ও ধর্ম বিষয়শ্রেণী:অলৌকিক ক্ষমতাধর বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীর গ্রিক ব্যক্তি
মিলেতুসের আনাক্সিমেনিস
https://bn.wikipedia.org/wiki/মিলেতুসের_আনাক্সিমেনিস
এনাক্সিমেনিস (খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৫-খ্রিস্টপূর্ব ৫২৫) () ছিলেন ষষ্ঠ শতকের গ্রিক দার্শনিক।Lindberg, David C. “The Greeks and the Cosmos.” The Beginnings of Western Science. Chicago: University of Chicago Press, 2007. 28. তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:গ্রিক গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫৮৫-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫২৫-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৬ষ্ঠ শতাব্দীর গ্রিক ব্যক্তি
পার্মেনিদিস
https://bn.wikipedia.org/wiki/পার্মেনিদিস
এলেয়া'র পার্মেনিদিস (গ্রিক ভাষায়: Παρμενίδης ὁ Ἐλεάτης) প্রাচীন বৃহত্তর গ্রিসের অন্তর্ভুক্ত দক্ষিণ ইতালির এলেয়া নগররাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী একজন সক্রেটিসপূর্ব দার্শনিক ও কবি যাকে এলেয়াবাদের (Eleaticism) জনক হিসেবে আখ্যায়িত করা হয়। একটি জটিল অধিবিদ্যক কবিতা রচনা করে তিনি প্রাচীন গ্রিসের সবচেয়ে প্রভাবশালী ও সবচেয়ে দুর্বোধ্য দার্শনিকদের একজন হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেছিলেন। এই কবিতাটি ছাড়া তার আর কোনো লেখা আমাদের হাতে এসে পৌঁছায়নি, এবং আসলে এই কবিতারও পুরোটা আমাদের হাতে নেই, কিছু খণ্ডাংশ আছে কেবল। তার দার্শনিক চিন্তাধারাকে দুই শব্দে প্রকাশ করতে হলে বলতে হয় সেটা ছিল এক ধরনের অধিবিদ্যক একত্ববাদ (metaphysical monism) — যা বলে বিশ্বে কেবল একটিই বা এক ধরনেরই জিনিস আছে। তিনি তার আগের দার্শনিকদের আনাড়ি বিশ্বতাত্ত্বিক মডেলগুলোর এত কড়া সমালোচনা করেছিলেন যে তার পরবর্তীকালের সব গ্রিক বিশ্বতাত্ত্বিক মডেলগুলোকে তার যুক্তির বিরুদ্ধে দেয়া জবাব হিসেবে ধরে নেয়া যায়। তাকে অনেক সময় ক্সেনোফানিসের শিষ্য হিসেবে আখ্যায়িত করা হয় এবং তিনি নিঃসন্দেহে হেরাক্লেইতোসের পর লেখা শুরু করেছিলেন, কারণ তার চিন্তাধারাকে খুব স্পষ্টভাবেই হেরাক্লেইতোসের চিন্তাধারার প্রতিবাদ হিসেবে বিবেচনা করা যায়; পার্মেনিদিস যদি একত্ববাদের পুরোধা হয়ে থাকেন তবে হেরাক্লেইতোস ছিলেন বহুত্ববাদের পুরোধা। জীবন ও কর্ম পার্মেনিদিসের জন্মের বছর অনুমান করার একমাত্র উপায় প্লেটোর সংলাপ পার্মেনিদিস পাঠ। এই সংলাপে দেখানো হয় যে, ৬৫ বছর বয়স্ক পার্মেনিদিস তার শিষ্য জিনোকে সাথে নিয়ে পানাথানাইয়া ক্রীড়া-উৎসব দেখতে এথেন্সে এসেছেন এবং আসার পর তাদের সাথে "কম বয়স্ক" সক্রেটিসের দেখা হয়েছে। "কম বয়স্ক" বলতে প্লেটো সম্ভবত ২০ বছর বুঝিয়েছিলেন, এবং ৩৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মৃত্যুর সময় সক্রেটিসের বয়স যেহেতু আনুমানিক ৭০ বছর ছিল সেহেতু ধরে নেয়া যায় যে, পার্মেনিদিস আনুমানিক ৫১৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর শুরু থেকে মাঝামাঝি সময় পর্যন্ত দর্শনজগতে সক্রিয় ছিলেন। পার্মেনিদিস যে তার জন্মনগরী এলেয়াতে খুব বিখ্যাত ছিলেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় প্লেটোর পরে আকাদেমি-র প্রধান হওয়া স্পেউসিপ্পোস-এর একটি লেখা থেকে। পরবর্তী লেখকদের সূত্রে জানা গেছে স্পেউসিপ্পোস তার On Philosophers বইয়ে লিখেছিলেন যে পার্মেনিদিস এলেয়া শহরের নাগরিকদের জন্য আইন রচনা করেছিলেন, যদিও পার্মেনিদিসের জন্ম হয়েছিল এলেয়া নগরী পত্তনের প্রায় ত্রিশ বছর পর। প্রাচীন ইতিহাসবিদরা সঙ্গত কারণেই পার্মেনিদিসকে তার এক প্রজন্ম আগের দার্শনিক ক্সেনোফানিস ও পিথাগোরাসবাদীদের সাথে যুক্ত করেন; ক্সেনোফানিসের সাথে তার খুব সম্ভবত দেখাও হয়েছিল। ১৯৬০-এর দশকে প্রাচীন এলেয়া নগরীর ধ্বংসাবশেষের নিকটে পার্মেনিদিসের খ্রিস্টীয় ১ম শতকের একটি আবক্ষমূর্তি পাওয়া গিয়েছিল যাতে খোদিত আছে, "পার্মেনিদিস, পিরেস এর পুত্র, ঔলিয়াদিস, প্রাকৃতিক-দর্শন-বিদ"; বুঝাই যাচ্ছে যে এখানে তাকে দেবতা অ্যাপোলো'র ভিষক (গ্রিক ভাষায় ঔলিওস মানে ভিষক) রূপের সাথে যুক্ত করা হয়েছে। প্রাচীন গ্রিক জীবনীকার দিয়োগেনিস লায়ের্তিওস এর বই থেকে জানা যায় পার্মেনিদিস জীবনে কেবল একটি বইই লিখেছিলেন — হোমারীয় ষড়মাত্রিক ছন্দে লেখা একটি অধিবিদ্যক ও বিশ্বতাত্ত্বিক কাব্যগ্রন্থ। বইটি পরবর্তীতে পেরি ফিসেওস (Περί φύσεως — On Nature) নামে পরিচিত হলেও পার্মেনিদিসের দেয়া নাম সম্ভবত এটা ছিল না। কবিতাটিতে সম্ভবত ৮০০ পঙ্‌ক্তি ছিল যার মধ্যে বর্তমানে মাত্র ১৬০টি পঙ্‌ক্তি সংরক্ষিত আছে, যেগুলো ছড়িয়ে আছে বেশ কয়েকটি টুকরোতে। একেক টুকরোতে সংরক্ষিত পঙ্‌ক্তির সংখ্যা একেক রকম — একটিতে যেখানে মাত্র একটি শব্দ পাওয়া যায় সেখানে ৮ নং টুকরোটিতে পাওয়া যায় ৬২টি অবিচ্ছিন্ন পঙ্‌ক্তি। এই পঙ্‌ক্তিগুলো সংরক্ষিত থাকার একমাত্র কারণ প্লেটো থেকে শুরু করে পরবর্তী অনেক লেখক তাদের লেখায় কবিতাটির বিভিন্ন অংশ সরাসরি উদ্ধৃত করেছেন। যেমন ১ম টুকরোর ৩২টি পঙ্‌ক্তির মধ্যে ৩০টি-ই পাওয়া গেছে সেক্সতুস এম্পিরিকুসের লেখা থেকে। আলেকজান্দ্রিয়ার নব্য-প্লেটোবাদী দার্শনিক সিমপ্লিকিউসের হাতে সম্ভবত পার্মেনিদিসের বইটির একটি অখণ্ড সংস্করণ ছিল এবং এরিস্টটলের বইয়ের ভাষ্য লিখতে গিয়ে তিনি তা থেকে অনেক কিছু উদ্ধৃত করেছেন। সিমপ্লিকিউসের ভাষ্যের এসব উদ্ধৃতির কারণেই "প্রকৃত বাস্তবতা" সম্পর্কে পার্মেনিদিসের অধিবিদ্যক যুক্তিগুলো আমরা প্রায় পুরোপুরি জানি। "কিসের অস্তিত্ব আছে" সে সম্পর্কে পার্মেনিদিসের ধারণাগুলো অনেকটা জানলেও কবিতাটির শেষের দিকে তিনি যে বিশ্বতত্ত্ব তুলে ধরেছেন তা তার কবিতার বিদ্যমান অংশ থেকে অতটা বুঝা যায় না; এর জন্য কবিতাটির পাশাপাশি নির্ভর করতে হয় পরবর্তী লেখকদের সাক্ষ্যের উপর।Coxon, A. H. 2009. The Fragments of Parmenides: A critical text with introduction, translation, the ancient testimonia and a commentary. Revised and expanded edition with new translations by Richard McKirahan. Las Vegas/Zurich/Athens: Parmenides Publishing. পার্মেনিদিসের কবিতা পেরি ফিসেওস এর উপক্রমণিকাতে পার্মেনিদিস তার একটি রূপক ভ্রমণের বৃত্তান্ত শোনান। বর্ণনা করেন কীভাবে সূর্যদেবতার কুমারী কন্যারা তার রথকে পথ দেখিয়ে দেবালয়ে নিয়ে যায়। কুমারীরা যে "রাত্রির ঘর" থেকে এসেছে সেদিকেই তাকে নিয়ে যাচ্ছে এবং ঘরটিতে প্রবেশের পথে আছে "দিবা এবং রাত্রির পথে যাওয়ার দরজা।" কুমারীরা দরজাটির পাহারাদার ন্যায়বিচারকে পার্মেনিদিসকে ভিতরে প্রবেশ করতে দিতে রাজি করায়। প্রবেশের পর দেবালয়ের দেবী পার্মেনিদিসকে কীভাবে স্বাগত জানায় তা তিনি বর্ণনা করেছেন এভাবে, "দেবী আমায় সদয়ভাবে গ্রহণ করেন, এবং তার হাতে নেন আমার ডান হাত, এবং আমাকে সম্বোধন করে বলেন: 'হে তরুণ, যে এসেছ অমর সারথিদের সাথে এবং আমাদের দেবালয়ে তোমায় বয়ে আনা ঘোটকীদের সাথে, স্বাগতম, কারণ সে নিশ্চয়ই কোনো মন্দভাগ্য নয় যে তোমায় এনেছে এই দিকে (কারণ নিঃসন্দেহে এটা মানুষের পথ থেকে বহুদূরে), বরং সে হলো সদাচার ও ন্যায়বিচার।'" (টুকরো ১.২২–২৮)Poem of Parmenides translated into English by John Burnet (1892). তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫১০-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪৫০-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক
আনাক্সাগোরাস
https://bn.wikipedia.org/wiki/আনাক্সাগোরাস
থাম্ব|upright=1.5|নুরেমবার্গ ক্রনিকলে (Nuremberg Chronicle) মধ্যযুগীয় পণ্ডিত হিসাবে চিত্রিত অ্যানাক্সাগোরাস এনাক্সাগোরাস (প্রাচীন গ্রিক: Αναξαγόρας আনাক্সাগোরাস্‌, আনু খ্রিস্টপূর্ব ৫০০-খ্রিস্টপূর্ব ৪২৮) ছিলেন প্রাক-সক্রেটীয় যুগের গ্রিক দার্শনিক। এনাক্সাগোরাস প্রথম দার্শনিক যিনি এথেন্সে দর্শন এনেছিলেন। জীবনের শেষের দিকে তিনি নাস্তিকতা প্রচারের দায়ে নির্বাসিত হন। যদিও এই অভিযোগ রাজনৈতিক হতে পারে কারণ পেরিক্লিস এর সাথে তার যোগাযোগ ছিল।. তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:গ্রিক গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫০০-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪২৮-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:দর্শনের ইতিহাস বিষয়শ্রেণী:বিজ্ঞানের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:শিক্ষার দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:শিক্ষার ইতিহাস বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:প্রাচীন গ্রিক গণিতবিদ বিষয়শ্রেণী:প্রাকৃতিক দার্শনিক
এম্পেদোক্লেস
https://bn.wikipedia.org/wiki/এম্পেদোক্লেস
এম্পেদোক্লেস (প্রাচীন গ্রিক Εμπεδοκλής এম্পেদোক্ল্যাস্‌, খ্রিস্টপূর্ব ৪৯০ - খ্রিস্টপূর্ব ৪৩০) ছিলেন সক্রেটিস পূর্ববর্তী সময়কালীন একজন গ্রিক দার্শনিক। তিনি গ্রিক নগর শহর সিসিলির অ্যাগেজন্টামের নাগরিক ছিলেন। এমপেডোক্লিসের দর্শনে বলা হয় চারটি ধ্রুপদী উপাদানের সমন্বয়ে সৃষ্টিতত্ত্বের উৎপত্তি হয়েছে। চারটি উপাদান হল পানি, মাটি, বায়ু ও আগুন। তিনি বলেন ভালোবাসা ও বিবাদ নামক দুটি বল উপাদানসমূহকে একত্রিত ও আলাদা করে থাকে।কোন এক ধরনের জীব অপর এক প্রকার জীব হতে উৎপত্তি লাভ করতে পারে এমন ধারণা এনাক্সিম্যান্ডার ও এম্পেডকলসের মত প্রাথমিককালের কয়েকজন সক্রেটিস-পূর্ব গ্রিক দার্শনিক সর্বপ্রথম প্রস্তাব করে থাকেন। রোমান যুগে এমন কিছু প্রস্তাবনার অস্তিত্ব ছিল। কবি ও দার্শনিক লুক্রেটিয়াস তার বৃহৎকর্ম দে রেরাম ন্যাচুরা (অন দ্য ন্যাচার অব থিংস )-এ এম্পেডকালসের চিন্তাধারাকে অনুসরণ করেন। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Empedocles Fragments, translated by Arthur Fairbanks, 1898. Empedocles by Jean-Claude Picot with an extended and updated bibliography Empedocles Fragments at demonax.info বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর গ্রিক ব্যক্তিত্ব বিষয়শ্রেণী:প্রকৃতিবাদী দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:বিজ্ঞানের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:প্রাকৃতিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:প্রেমের দার্শনিক
এলেয়ার জিনো
https://bn.wikipedia.org/wiki/এলেয়ার_জিনো
এলেয়ার জিনো (প্রাচীন গ্রিক: Ζήνων Έλεάτης জ়্দ্যানন্‌ এলেয়াত্যাস্‌, আধুনিক গ্রিক: Ζήνων ο Ελεάτης জ়িনন্‌ অ এলেয়াতিস্‌) (খ্রিস্টপূর্ব ৪৯০ – খ্রিস্টপূর্ব ৪৩০) একজন গ্রিক দার্শনিক ছিলেন। জীবনী জিনোর জীবনী সম্পর্কে খুব অল্প জানা গেছে। যদিও জিনোর মৃত্যুর প্রায় এক শতাব্দী পরে লেখা হয়েছে, জিনো সম্পর্কে জীবনীমূলক তথ্যের প্রারম্ভিক উৎস হল প্লেটোর পার্মিনিদিস।প্লেটো (আনু. ৩৮০ – ৩৬৭ খ্রিস্টপূর্ব)। Parmenides , বেঞ্জামিন জোয়েট কর্তৃক অনুবাদকৃত। ইন্টারনেট ক্লাসিক আর্কাইভ। এবং এরিস্টটলের ফিজিক্স বইতেও তার উল্লেখ রয়েছে।এরিস্টটল (আনু. মধ্য ৪র্থ শতাব্দী খ্রিস্টপূর্ব), Physics ২৩৩a ও ২৩৯b। পার্মিনিদিস-এর সংলাপে প্লেটো জিনো ও পার্মেনিদিসের ধ্রুপদী এথেন্সে ভ্রমণের বর্ণনা করেন, যখন পার্মিনিদিসের বয়স ছিল "প্রায় ৬৫", জিনোর "৪০-এর কাছাকাছি" এবং সক্রেটিস "খুবই তরুণ" ছিলেন।প্লেটো, Parmenides ১২৭b–e. ধারণা করা হয় সক্রেটিস তখন ২০ বছরের কাছাকাছি ছিলেন এবং সক্রেটিসের জন্ম ৪৬৯ খ্রিস্টপূর্ব ধরে জিনোর সম্ভাব্য জন্মের সাল ধরা হয় ৪৯০ খ্রিস্টপূর্ব। প্লেটো বলেন জিনো দেখতে লম্বা ও সুন্দর ছিলেন এবং তার তারুণ্যের দিনগুলিতে পার্মেনিদিস তাকে পছন্দ করতেন। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪৯০-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪৩০-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক
লেউকিপ্পোস
https://bn.wikipedia.org/wiki/লেউকিপ্পোস
right|thumb|লিউকিপ্পাস লিউকিপ্পাস (প্রাচীন গ্রিক: Λεύκιππος লেউকিপ্পোস্‌, খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর প্রথমার্ধ) ছিলেন প্রথম দিকের পরমাণুবাদী দার্শনিকদের অন্যতম। তিনি মাইলেটাসে (মতান্তরে অ্যাবডেরায়) জন্মগ্রহণ করেন। বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক
প্রোটাগোরাস
https://bn.wikipedia.org/wiki/প্রোটাগোরাস
REDIRECT প্রোতাগোরাস
হিপোক্রেটিস
https://bn.wikipedia.org/wiki/হিপোক্রেটিস
কসের হিপোক্রেটিস (; Ἱπποκράτης ইপ্পোক্রাতেস্‌); ) (৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ - ৩৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ), যিনি দ্বিতীয় হিপোক্রেটিস নামেও পরিচিত, পেরিক্লেসের যুগের একজন প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসক ছিলেন, যাঁকে চিকিৎসাশাস্ত্রের ইতিহাসে সর্বাধিক উল্লেখযোগ্য ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বলে গণ্য করা হয়। হিপোক্রেটীয় চিকিৎসাশৈলীর উদ্ভাবনের স্বীকৃতিতে তাঁকে পশ্চিমী চিকিৎসাশাস্ত্রের পিতা বলে অভিহিত করা হয়ে থাকে। তাঁর শৈলী দর্শন ও ধর্মীয় রীতিনীতি থেকে পৃথক করে চিকিৎসাশাস্ত্রকে একটি পেশা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসাশাস্ত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনে। কর্পাস হিপোক্রেটিকামের লেখক ও হিপোক্রেটীয় চিকিৎসকদের কৃতিত্ব এবং স্বয়ং হিপোক্রেটিসের কার্যকলাপ প্রায়শঃই জনমানসে একাকার হলেও, হিপোক্রেটিস কি ভাবতেন, লিখতেন বা করতেন, তা নিয়ে খুব অল্পই জানা যায়। বর্তমানকালেও গুরুত্বপূর্ণ ও ব্যবহৃত হিপোক্রেটীয় শপথ রচনার কৃতিত্বও হিপোক্রেটিসকে দেওয়া হয়ে থাকে। মনে করা হয়ে থাকে, তিনি পুরাতন চিকিৎসাশৈলীগুলিকে একত্র করে এবং চিকিৎসকদের জন্য চিকিৎসা সংক্রান্ত নীতিমালা তৈরি করে নিদানিক চিকিৎসাবিদ্যার পদ্ধতিগত অধ্যয়নকে বহুলাংশে অধ্যয়ন করেন। জীবনী হিপোক্রেটিসের সমসাময়িক প্লেটো রচিত প্রোতাগোরাস এবং ফাইদ্রোস এবং অ্যারিস্টটল রচিত পলিটিক্স নামক গ্রন্থে তাঁর উল্লেখ রয়েছে। হিপোক্রেটিসের প্রথম জীবনীকার দ্বিতীয় শতাব্দীর গ্রিক স্ত্রীরোগবিশারদ এফেসোসের সোরানোসের রচনা থেকেই তাঁর সম্বন্ধীয় ব্যক্তিগত তথ্য জানান যায়। দশম শতাব্দীতে রচিত সুদা এবং দ্বাদশ শতাব্দীতে জন জেটজেসের রচনা তাঁর পরবর্তী জীবনী। ঐতিহাসিকদের মতে, হিপোক্রেটিস আনুমানিক ৪৬০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে কস নামক একটি গ্রিক দ্বীপে জন্মগ্রহণ করেন। সোরানোস লিখেছেন যে হিপোক্রেটিসের পিতা হেরাক্লিদেস একজন চিকিৎসক ছিলেন এবং মাতা প্রাক্সিতেলা ছিলেন তিজানের কন্যা। হিপোক্রেটিসের দুই পুত্র থেসালোস ও দ্রাকো এবং জামাতা পলিবোস তাঁর ছাত্র ছিলেন। গ্যালেনের মতে, পলিবোস ছিলেন হিপোক্রেটিসের প্রকৃত উত্তরাধিকারী এবং থেসালোস ও দ্রাকো উভয়েরই হিপোক্রেটিস (তৃতীয় ও চতুর্থ হিপোক্রেটিস) নামে একটি করে পুত্রসন্তান ছিল। সোরানোসের মতে, পিতামহ প্রথম হিপোক্রেটিস ও পিতা হেরাক্লিদেসের নিকট হতে হিপোক্রেটিস চিকিৎসাশাস্ত্র সম্বন্ধে শিক্ষালাভ করেন। এছাড়া তিনি দিমোক্রিতাস ও গোর্গিয়াসের সঙ্গে অন্যান্য বিষয় অধ্যয়ন করেন। সম্ভবত তিনি কসের আসক্লেপিয়েইওনে থ্রেসের চিকিৎসক হেরোদিকোসের নিকট শিক্ষালাভ করেন। প্লেটো রচিত প্রোতাগোরাস গ্রন্থে হিপোক্রেটিসকে আসক্লেপিয়াদ উপাধিধারী কসের হিপোক্রেটিস নামে উল্লেখ করেছেন।Plato 380 B.C. তিনি তাঁর ফাইদ্রোস গ্রন্থে বলেছেন যে আসক্লেপিয়াদ হিপোক্রেটিস মনে করতেন, চিকিৎসাবিদ্যায় শরীরের প্রকৃতির সম্পূর্ণ জ্ঞান প্রয়োজন।Plato 360 B.C. 270c হিপোক্রেটিস সারা জীবন চিকিৎসাবিদ্যা অধ্যয়ন ও শিক্ষাদান করেন। তিনি কমপক্ষে থেসালি, থ্রেস ও মার্মারা সমুদ্র পর্য্যন্ত ভ্রমণ করেন। তাঁর মৃত্যু সম্পর্কে অনেক রকম তথ্য পাওয়া যায়। সম্ভবতঃ তিনি ৮৩, ৮৫ বা ৯০ বছর বয়সে লারিসায় মারা যান, যদিও কেউ কেউ মনে করেন, তিনি শতাধিক বছর জীবিত ছিলেন। তত্ত্ব হিপোক্রেটিসকে প্রথম ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করা হয় যিনি বিশ্বাস করতেন যে, কুসংস্কার বা ঈশ্বর থেকে নয়, বরং প্রাকৃতিক উপায়ে রোগের প্রকোপ ঘটে পিথাগোরাসের শিষ্যদের মতে, হিপোক্রেটিস দর্শন ও চিকিৎসাশাস্ত্রের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করেন কিন্তু বস্তুতঃ তিনি ধর্ম হতে চিকিৎসাবিদ্যাকে পৃথক করেন এবং মতপ্রকাশ করেন যে, রোগ দেবতাদের দ্বারা ঘটে না বরং, জীবনযাপনপদ্ধতি, খাদ্য ও প্রাকৃতিক পরিবেশের দ্বারা নিরূপিত হয়। এমনিকি কর্পাস হিপোক্রেটিকামে কোথাও রহস্যজনক অসুস্থতার উল্লেখ পর্যন্ত করা হয়নি। প্রাচীন গ্রিক চিকিৎসাপদ্ধতি নিডোস ও কস এই দুই অঞ্চলের প্রচলিত পদ্ধতিতে বিভক্ত ছিল। নিডোস অঞ্চলের চিকিৎসাপদ্ধতি রোগনির্ণয়ের ওপর নির্ভর করত, কিন্তু একটি রোগেরই বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দিলে এই পদ্ধতি বিফল হত। অন্যদিকে কস অঞ্চলে প্রচলিত হিপোক্রেটীয় চিকিৎসাপদ্ধতি রোগনির্ণয়ের ওপর নির্ভর না করে রোগীর সেবা ও আরোগ্য সম্ভাবনাকে প্রাধান্য দিত, যা রোগ নিরাময়ে অধিক সাফল্যের কারণ হয়ে ওঠে। রোগীর নিকট হতে বিশদে রোগের ইতিহাস জেনে তাঁর আরোগ্য সম্ভাবনা বোঝার চেষ্টা করা হত। হিপোক্রেটীয় চিকিৎসাপদ্ধতিতে সঙ্কটমুহুর্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। সঙ্কটমুহুর্ত এমন একটি সময় যখন হয় রোগীর মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা তৈরি হয় অথবা প্রাকৃতিক প্রক্রিয়ায় রোগনিরাময় ঘটার ফলে রোগী বেঁচে যান। সঙ্কটমুহুর্ত পেরোলে আবার একটি এরকম মুহুর্ত আশার সম্ভাবনা থাকে, যা রোগীর জীবনমৃত্যুর ক্ষেত্রে নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করে। হিপোক্রেটীয় তত্ত্বানুসারে, রোগ শুরু হওয়ার একটি বিশেষ সময় পরেই সঙ্কটের সময় শুরু হয়। এই নির্দিষ্ট সময়ের অনেক পরে যদি সঙ্কটমুহুর্ত আসে, তবে তা বারবার ফিরে আসতে পারে। গ্যালেনের মতে, এই ধারণা হিপোক্রেটিস প্রথম প্রচলন করেন, যদিও তাঁর পূর্ব থেকেই এই ধারণা প্রচলিত ছিল এমন মত রয়েছে। হিপোক্রেটীয় চিকিৎসাপদ্ধতি একটি নিরীহ ও নিষ্ক্রিয় পদ্ধতি বিশেষ। প্রকৃতির নিরাময়শক্তির ওপর এই পদ্ধতি নির্ভর করত। এই তত্ত্বানুসারে, চারটি ধাতুর ভারসাম্য রক্ষা করার ক্ষমতা শরীরের রয়েছে যা নিরাময়ের জন্য প্রয়োজনীয়। সেই কারণে এই চিকিৎসাপদ্ধতি এই প্রাকৃতিক উপায়কে আরও সহজ করার দিকে মনোযোগ দেয়। রোগীকে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা ও শরীরের বিশ্রামের গুরুত্ব ছিল সবচেয়ে বেশি। হিপোক্রেটীয় পদ্ধতি সাধারণভাবে রোগীদের একদমই কষ্ট দিত না। যেমন, বিশুদ্ধ জল বা মদ দিয়ে ক্ষত পরিষ্কার করা হত। কখনও বা আরামদায়ক মলম লাগানোও হয়ে থাকত। হিপোক্রেটিস ওষুধ প্রদান বিশেষজ্ঞ চিকিৎসা প্রদান করতে চাইতেন না। সাধারণ রোগনির্ণয়ের পর সাধারণ চিকিৎসা করা হত। তিনি সাধারণ চিকিৎসা হিসেবে উপবাস ও আপেলসুরার সির্কা পান করার পথয় দিতেন। তাঁর মতে রোগের সময় খাদ্যগ্রহণ করলে তা রোগকেই খাবার দেওয়ার মত হয়। তথ্যসূত্র উৎস . . . . . . PMID 3959439 . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . . আরও পড়ুন . . . . বহিঃসংযোগ The Harvard Classics Volume 38 with "The Oath of Hippocrates", project gutenberg Hippocrates entry in the Internet Encyclopedia of Philosophy First printed editions of the Hippocratic Collection at the Bibliothèque Interuniversitaire de Médecine of Paris (BIUM) studies and digitized texts by the BIUM (Bibliothèque interuniversitaire de médecine et d'odontologie, Paris) see its digital library Medic@. Wesley D. Smith. Hippocrates. Free full-text article from Encyclopædia Britannica Online. Last accessed 24 April 2012. বিষয়শ্রেণী:চিকিৎসক বিষয়শ্রেণী:গ্রিক সভ্যতা বিষয়শ্রেণী:দর্শনের ইতিহাস
সক্রেটিস
https://bn.wikipedia.org/wiki/সক্রেটিস
স্টিল্‌পো
https://bn.wikipedia.org/wiki/স্টিল্‌পো
স্টিল্‌পো ছিলেন গ্রিক দার্শনিক। তিনি থিওফ্রাস্টাস এবং সক্রেটিসের সমসাময়িক কালের দার্শনিক ছিলেন। তার কোন লেখাই সংরক্ষিত অবস্থায় পাওয়া যায় নাই। তিনি মূলত যুক্তিবিদ্যার উপর বিষদ আলোচনা করেছেন। তার দর্শনের মুলে রয়েছে বৈরাগ্যবাদ ও স্টয়িকবাদ। তার উল্লেখযোগ্য শিষ্যের মধ্যে জেনো অন্যতম, যিনি স্টয়িকবাদের গুরু হিসেবে পরিচিত।Sénèque, Lettres à Lucilius I, 9 (19). তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক
প্লেটো
https://bn.wikipedia.org/wiki/প্লেটো
প্লেটো (প্রাচীন গ্রিক ভাষায় Πλάτων প্লাতন্‌) (খ্রিষ্টপূর্ব ৪২৭ - খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪৮) বিশ্ববিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক। তিনি দার্শনিক সক্রেটিসের ছাত্র ছিলেন এবং দার্শনিক এরিস্টটল তার ছাত্র ছিলেন। এ হিসেবে প্রাচীন গ্রিসের সবচেয়ে প্রভাবশালী তিনজন দার্শনিকের মধ্যে প্লেটো দ্বিতীয়। প্রথম সক্রেটিস এবং শেষ এরিস্টটল। এরাই পশ্চিমা দর্শনের ভিত রচনা করেছেন বলা যায়। প্লেটো একাধারে গণিতজ্ঞ এবং দার্শনিক ভাষ্যের রচয়িতা হিসেবে খ্যাত। তিনিই পশ্চিমা বিশ্বে উচ্চ শিক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলেন। এটি ছিল এথেন্সের আকাদেমি। প্লেটো সক্রেটিসের অনুরক্ত ছাত্র ছিলেন, সক্রেটিসের অনৈতিক মৃত্যু তার জীবনে প্রগাঢ় প্রভাব ফেলেছে। জীবনী জন্ম প্লেটোর সঠিক জন্ম তারিখ সম্পর্কে জানা যায়নি। প্রাচীন তথ্যসূত্রগুলো অধ্যয়নের মাধ্যমে আধুনিকতম বিশেষজ্ঞরা ধারণা করেছেন প্লেটো ৪২৮ থেকে ৪২৭ খ্রীস্টপূর্বাব্দের কোন এক সময়ে গ্রিসের এথেন্স বা এজিনায় জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবার নাম এরিস্টন। ডায়োজিনিস লিরটিয়াসের প্রদত্ত তথ্যমতে এরিস্টনের পূর্বপুরুষ ছিল এথেন্সের রাজা কডরাস এবং মেসেনিয়ার রাজা মেলানথাস।Diogenes Laertius, Life of Plato, III* D. Nails, "Ariston", 53* U. von Wilamowitz-Moellendorff, Plato, 46 প্লেটোর মা'র নাম পেরিকটিওন যার পারিবারিক পূর্বপুরুষ ছিল বিখ্যাত এথেনীয় আইনজ্ঞ এবং কবি সোলন।Diogenes Laertius, Life of Plato, I এ হিসেবে প্লেটো মা ও বাবা উভয় দিক দিয়েই বিশেষ বংশমর্যাদার অধিকারী ছিলেন। এছাড়াও প্লেটো সুদর্শন ও স্বাস্থ্যবান ছিলেন। বলা হয়ে থাকে, আয়তাকার কাঁধের অধিকারী ছিলেন বলেই সবাই তাকে প্লেটো নামে ডাকতো। দর্শনের প্রতি অনন্যসাধারণ নিষ্ঠা ছাড়াও তার বেশ কিছু গুণ ছিল। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল তিনি সৈনিক ও ক্রীড়াবিদ হিসেবে প্রভূত সুখ্যাতি অর্জন করেছিলেন। শৈশব ও শিক্ষা প্লেটো যে পরিবারে জন্মগ্রহণ করেছিলেন তা শিক্ষা গ্রহণের জন্য ছিল সুবিশেষ অনুকূল। এই সুযোগের সঠিক সদ্ব্যবহার করেতে পেরেছিলেন প্লেটো। সমকালীন শিক্ষার সবরকম সুযোগ-সুবিধাই তিনি গ্রহণ করতে পেরেছিলেন। হেরাক্লিটাসের একটি বিখ্যাত দার্শনিক মত ছিল, পরিবর্তনশীল ইন্দ্রিয়জগৎ সম্পর্কে কোন স্থিত জ্ঞান সম্ভব নয়। এরিস্টটলের মতে, এই দার্শনিক মতের সাথে প্লেটো বাল্যকালেই পরিচিত হয়েছিলেন। এছাড়াও প্লেটোর জীবনে এসময় প্রভাব পড়েছিল পারমেনাইডিস এবং পিথাগোরাসের দর্শনের। প্লেটো ও সক্রেটিস প্লেটোর জীবনে সবচেয়ে বেশি যিনি প্রভাব ফেলেছিলেন তিনি হলেন তার শিক্ষক মহামতি সক্রেটিস। তার জীবনে সক্রেটিসের প্রভাব অতি সুস্পষ্ট কারণ সক্রেটিসের সব কথোপকথন প্লেটোই লিখে গেছেন। শৈশবকাল থেকেই প্লেটোর সাথে সক্রেটিসের পরিচয় ছিল। গ্রন্থাবলি প্লেটো রচিত গ্রন্থাবলির নাম ও বিষয়বস্তুঃ এপোলজি (Apology) এথেন্সের আদালতে সক্রেটিস কীভাবে আত্মপক্ষ সমর্থন করেন, এ গ্রন্থে প্লেটো তারই বর্ণনা দিয়েছেন, ক্রিটো (Crito) তে সক্রেটিসকে একজন বিশ্বস্ত রাজভক্ত হিসেবে দেখানো হয়েছে ; ইউথ্রিফ্রনে (Euthyphron) ধর্মের প্রকৃতি, ল্যচেস (Laches) এ সাহসিকতা, আইয়নে (Ion) অনুধ্যানবিহীন সেনাপতি ও কবি ব্যক্তি সম্পর্কিত, প্রোটাগোরাস (Protagoras) এ তার অযথার্থবাদ ও সক্রেটিসের যথার্থবাদের আলোচনা, চারমাইডিসে (Charmydes) মিতাচার সম্পর্কে, লাইসিসে (Lysis) বন্ধুত্ব সম্পর্কে, রিপাবলিক (Republic) গ্রন্থে আদর্শ রাষ্ট্রের বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে, জর্জিয়াসে (Gorgias) জ্ঞান ও শক্তির তুলনামূলক উৎকৃষ্টতা সম্বন্ধে, মেনোতে (Meno) সত্যতা ও জ্ঞানের মাত্রাভেদ, সহজাত ও লৌকিক ধারণার প্রয়োগিক মূল্য সম্পর্কে, ইউথিডেমাসে (Euthydemus) সোফিস্টদের ক্ষেত্রে সঠিক আদর্শগত মানদ- বিষয়ক, ক্রেটিলাসে (Cratylus) ভাষাতত্ত্ব সম্পর্কে, ফিডোতে (Phaedo) আত্মার অমরতা, ফিড্রাসে (Phaedrus) তার্কিকদের বিচারের প্রতিবাদ, থিয়্যাটেটাসে (Theaetetus) রাষ্ট্র ও দর্শন তথা ইন্দ্রিয়লব্ধ ও বৌদ্ধিক জ্ঞানের অসঙ্গতি সম্পর্কে, পারমেনাইডিসে (Parmenides) সত্তা ও জগতের সম্পর্ক, সোফিস্টে (Sophist) তাদের ইন্দ্রিয়লব্ধ বিচ্ছিন্ন জ্ঞানের অসারতা এবং সার্বিক প্রজ্ঞালব্ধ জ্ঞানের যৌক্তিকতা প্রদর্শিত হয়, ফাইলিবাসে (Philebus) সুখ ও শুভের ধারণা, টাইমীয়াসে (Timaeus) সৃষ্টিতত্ত্ব এবং লজে (Laws) রিপাবলিকে স্বীয় মন্তব্যের আংশিক প্রত্যাহার এবং রাষ্ট্র ও আইন বিষয়ে মূল্যবান আলোচনা সংযোজিত হয়েছে। দর্শন সাম্যবাদ প্লেটো তার দি রিপাবলিক গ্রন্থে সাম্যবাদ নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি তৎকালীন আর্থ-সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষাপটে সাম্যবাদ-এর ধারণা দিয়েছিলেন। আধুনিক সাম্যবাদ হলো প্লেটোর কাছ থেকে ধার করা সাম্যবাদ। আধুনিক সাম্যবাদে শুধু ব্যক্তিগত সম্পত্তির বিলোপের কথা বলা হয়। আসলে দেখা যায়, প্লেটোর সাম্যবাদের কিছু অংশ বর্তমানেও বাস্তব। মৃত্যু মহান রাষ্ট্রচিন্তাবিদ প্লেটো খ্রাষ্টপূর্ব ৩৪৭অব্দে ৮০ বছর বয়সে মৃত্যুবরণ করেন। একটি বিকৃত গল্পের পাণ্ডুলিপির সূত্র থেকে জানা যায়, একটি ছোট মেয়ে তার কাছে বাঁশি বাজানো অবস্থায় প্লেটো তার বিছানায় স্বাভাবিকভাবে মৃত্যুবরণ করেন। আরেক বর্ণনা অনুযায়ী, প্লেটো একটি বিয়ের ভোজ খেতে গেলে সেখানেই মারা যান। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:খ্রিষ্টপূর্ব ৪২৭-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:খ্রিষ্টপূর্ব ৩৪৭-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ-শতাব্দীর দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ-শতাব্দীর কবি বিষয়শ্রেণী:সাংস্কৃতিক সমালোচক বিষয়শ্রেণী:পশ্চিমা সংস্কৃতি বিষয়শ্রেণী:পাশ্চাত্য সভ্যতার তাত্ত্বিক বিষয়শ্রেণী:সামাজিক সমালোচক বিষয়শ্রেণী:সামাজিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:সামাজিক ভাষ্যকার বিষয়শ্রেণী:সামাজিক বিজ্ঞানের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:বিজ্ঞানের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:ইতিহাসের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:শিক্ষার দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:সংস্কৃতির দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:শিক্ষার ইতিহাস বিষয়শ্রেণী:ভাববাদী বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:প্লেটো বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর গ্রিক ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর গ্রীক ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর লেখক বিষয়শ্রেণী:যুক্তিবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:প্রাকৃতিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:প্রেমের দার্শনিক
দিওগেনেস
https://bn.wikipedia.org/wiki/দিওগেনেস
right|thumb দিওগেনেস ছিলেন একজন গ্রিক দার্শনিক। তিনি খ্রিস্টপূর্ব ৪১২ অব্দে (মতান্তরে খ্রিস্টপূর্ব ৩৯৯) সিনোপে (বর্তমান তুরস্ক) জন্মগ্রহণ করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩ অব্দে করিন্থে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তিনি বিরাগীদের মধ্যে সব চেয়ে বিখ্যাত হয়ে আছেন। তিনি ছিলেন অ্যান্টিস্থেনিসের একজন ছাত্র। ইতিহাসবিদদের ভাষ্য মতে, দিওগেনেস একটি পিপার মধ্যে থাকতেন এবং তার জীবনদশায় উল্লেখযোগ্য সম্পত্তির মধ্যে একটি আলখাল্লা, একটি লাঠি আর রুটি রাখার একটি থলে ছিল।সি, স্ক্ৰীচিন্থ "এনসিয়েন্ট গ্রিক ফিলোসফি: কালেকটিভ উইজডম অফ টুয়েন্টি সিক্স গ্রিক থিংকার্স", চ্যাপ্টার: দিওগেনেস। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:তপস্বী বিষয়শ্রেণী:দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:সাংস্কৃতিক সমালোচক বিষয়শ্রেণী:সামাজিক সমালোচক বিষয়শ্রেণী:সামাজিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:সামাজিক ভাষ্যকার বিষয়শ্রেণী:অর্থশাস্ত্রের দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:সংস্কৃতির দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৩২৩-এ মৃত্যু
আসপাসিয়া
https://bn.wikipedia.org/wiki/আসপাসিয়া
থাম্ব|ভ্যাটিকান জাদুঘরে স্থাপিত আসপাসিয়ার মার্বেল পাথরের মূর্তি। এটি ১৯৭৭ সালে আবিষ্কৃত হয়। এটি রোমে নির্মিত হয়েছিলো আসপাসিয়া (প্রাচীন গ্রিক: আস্পাসিয়া আনুমানিক খ্রিস্ট পূর্ব ৪৭০D. Nails, The People of Plato, 58-59P. O'Grady, Aspasia of Miletus – খ্রিস্টপূর্ব ৪০০,A.E. Taylor, Plato: The Man and his Work, 41) প্রাচীন গ্রিসের একজন খ্যাতনামা মহিলা, যিনি অ্যাথেন্সের রাজনীতিবিদ পেরিক্লিস এর সাথে সম্পর্কের জন্য খ্যাতি অর্জন করেন।S. Monoson, Plato's Democratic Entanglements, 195 তার জন্ম এশিয়া মাইনরের মিলেতুস শহরে, কিন্তু তিনি পরে অ্যাথেন্সে চলে আসেন, ও আমৃত্যু সেখানেই কাটান। পেরিক্লিসের মরণের পর তিনি লাইসিক্লেস এর সাথে সম্পর্ক গড়ে তুলেন। পেরিক্লিস ও তার একটি পুত্র সন্তান হয়েছিল, যিনি ছোট পেরিক্লিস নামে খ্যাত ছিলেন যিনি সেনাপতি পদে অধিষ্ঠিত হন, এবং আরগুনুসির যুদ্ধের পর তাকে হত্যা করা হয়। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:গ্রিসের ইতিহাস বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪৭০-এর দশকে জন্ম বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪০০-এর দশকে মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর এথেন্সবাসী বিষয়শ্রেণী:অলঙ্কারশাস্ত্র
পেরিক্লিস
https://bn.wikipedia.org/wiki/পেরিক্লিস
ডান|থাম্ব পেরিক্লিস (প্রাচীন গ্রিক ভাষা: Περικλῆς পেরিক্ল্যাস্‌, অর্থাৎ "মহিমান্বিত", ৪৯৫ খ্রীস্টপূর্ব-৪২৯ খ্রীস্টপূর্ব) ছিলেন গ্রিক সভ্যতার স্বর্ণযুগে এথেন্স নগরের একজন প্রভাবশালী ও মান্যগণ্য নেতা, বক্তা এবং সেনাপতি। পারস্য ও পেলোপনেস যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়ে তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি আল্কমেনিডি পরিবারের সদস্য ছিলেন। বিষয়শ্রেণী:গ্রিক সভ্যতা বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৫ম শতাব্দীর এথেন্সবাসী বিষয়শ্রেণী:গ্রিসের সংস্কৃতি
মেগারার ইউক্লিড
https://bn.wikipedia.org/wiki/মেগারার_ইউক্লিড
মেগারার ইউক্লিড (প্রাচীন গ্রিক Ευκλείδης এউক্লেইদ্যাস্‌) খ্রিস্টপূর্বাব্দ ৪০০ বছর আগের সময়কালের দার্শনিক যিনি মেগারিক দর্শন নামে দর্শনের একটি ধারা সৃষ্টি করেছিলেন। তিনি সক্রেটিসের শিষ্য এবং তিনি তার মৃত্যুর সময় উপস্থিত ছিলেন। তিনি বিশ্বাস করতেন জগতের সবচেয়ে ভাল বিষয় এক, অনন্ত ও অপরিবর্তনশীল এবং ভালর বিপরীত কোন কিছুকে তিনি অস্বীকার করেন। জীবনী ইউক্লিড আনুমানিক ৪৩৫ খ্রিস্টপূর্বাব্দে মেগারায় জন্মগ্রহণ করেন।; Cicero, Academica, ii. 42; ; Plato, Phaedo, 59B-C; Strabo, ix. 1. 8; তিনি এথেন্সে এসে সক্রেটিসের শিষ্য হন। তিনি সক্রেটিসের পাঠ ও বক্তৃতা শুনার জন্য এতই উৎসুক ছিলেন যে মেগারার নাগরিকদের এথেন্সে ঢোকার নিষেধাজ্ঞা জারি করা হলে তিনি খুব ভোরে নারীর ছদ্মবেশে এথেন্সে চোরের মত ঢোকে যেতেন।Aulus Gellius, vii. 10. 1-4 সক্রেটিস ও থিয়েটেটাসের মধ্যকার আলাপ লিখে রাখার জন্য প্লাতোর থিয়েটেটাস-এর ভূমিকায় তার নাম উল্লেখ রয়েছে। সক্রেটিসের মৃত্যুর সময় (৩৯৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) তিনিও উপস্থিত ছিলেন।Plato, Phaedo, 59B-C এর পরে তিনি মেগারায় ফিরে আসেন এবং প্লাতোসহ সক্রেটিসের অন্যান্য ভীতসন্ত্রস্ত শিষ্যদের তিনি আশ্রয় নেওয়ার প্রস্তাব দেন।; পাদটীকা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিষয়শ্রেণী:খ্রিস্টপূর্ব ৪র্থ শতাব্দীর দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:গ্রিক দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:প্রাচীন গ্রিক শিক্ষাবিদ বিষয়শ্রেণী:প্রাচীন মেগারীয় বিষয়শ্রেণী:মেগারীয় দার্শনিক বিষয়শ্রেণী:সক্রেটিসের শিষ্য
সিগমুন্ড ফ্রয়েড
https://bn.wikipedia.org/wiki/সিগমুন্ড_ফ্রয়েড
সিগমুন্ড ফ্রয়েড (মে ৬, ১৮৫৬-সেপ্টেম্বর ২৩, ১৯৩৯) ছিলেন একজন অস্ট্রিয় মানসিক রোগ চিকিৎসক এবং মনস্তাত্ত্বিক। তিনি "মনোসমীক্ষণ" (Psychoanalysis) নামক মনোচিকিৎসা পদ্ধতির উদ্ভাবক। ফ্রয়েড "মনোবীক্ষণের জনক" হিসেবে পরিগণিত। তার বিভিন্ন কাজ জনমানসে বিরাট প্রভাব ফেলেছে। মানব সত্বার 'অবচেতন', 'ফ্রয়েডিয় স্খলন', 'আত্মরক্ষণ প্রক্রিয়া' এবং 'স্বপ্নের প্রতিকী ব্যাখ্যা' প্রভৃতি ধারণা জনপ্রিয়তা পায়। একই সাথে ফ্রয়েডের বিভিন্ন তত্ত্ব সাহিত্য, চলচ্চিত্র, মার্ক্সবাদী আর নারীবাদী তত্ত্বের ক্ষেত্রেও গভীর প্রভাব বিস্তার করে। তিনি ইডিপাস কমপ্লেক্স ও ইলেক্ট্রা কমপ্লেক্স নামক মতবাদ সমূহের জন্য অধিক আলোচিত। অবদান ১৯০০ থেকে ১৯৩০-এর দশক অর্থাৎ তার চুয়াল্লিশ বছর বয়েস থেকে আশি, এই সময়টায় ফ্রয়েড পরিণত হয়েছিলেন কিংবদন্তিতে। প্রকাশিত হয়েছে তার এমন সব তত্ত্বের বই যা পড়ে চমৎকৃত হয়েছেন মনোবিজ্ঞানীরা, তাক লেগে গেছে মধ্যবিত্ত সমাজের। তিনি বলেছিলেন যে মানুষের মনের মধ্যে আছে অজানা অচেনা এক অবচেতন, যার সিংহভাগ জুড়ে নানান গোলমেলে যৌন ইচ্ছে, ভীতি আর হিংসার প্রবণতা! পৃথিবীর নানান প্রান্ত থেকে ভিয়েনার ১৯ নম্বর বের্গেসি— যা কিনা ফ্রয়েডের বসতবাড়ি এবং ক্লিনিক, সেখানে যায় রোগীরা। মুগ্ধ হয় তার চিকিৎসা দেখে। ফ্রয়েড নিজেকে বিজ্ঞানীর চেয়ে বেশি এক জন ‘কন্‌কুইস্তাদর’ বলে ভাবেন— অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় এক মানুষ, যে অতিক্রম করতে চায় একের পর এক বাধা। প্রায় চল্লিশ বছর ধরে ভিয়েনাবাসী তাঁকে জেনেছেন এক জন সহানুভূতিশীল, সংস্কৃতিমনস্ক, বিত্তবান, তীক্ষ্ণ মেধার মানুষ বলে, নিজের সামাজিক প্রতিপত্তি বিষয়ে যিনি সজাগ। স্বদেশ ত্যাগ অবস্থা বদলাতে শুরু করল ১৯৩৩-এ জার্মান রাইখের অপ্রতিরোধ্য নেতা ও নায়ক অ্যাডল্ফ হিটলারর উত্থানের সঙ্গে। দুঃসময় যে আসছে তার অশনি সঙ্কেত ছিল হিটলার-সমর্থক নাৎসিদের বামপন্থা, গণতন্ত্র বা মানুষের অধিকার সংক্রান্ত বইয়ের প্রতি আক্রোশ। কার্ল মার্ক্স, টমাস মান, কাফকা, অ্যালবার্ট আইনস্টাইনের বইয়ের সঙ্গে তার বইও স্তূপাকার করে আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে শুনে ফ্রয়েড নাকি একটু শ্লেষের হাসি হেসে বলেছিলেন, ‘‘মধ্যযুগ হলে আমাকেও পুড়িয়ে মারত, এখন তো শুধু আমার লেখা কেতাব জ্বালিয়ে দিচ্ছে। এরা কতটা অগ্রসর হয়েছে ভাবো।’’ ফ্রয়েড কি ভাবতে পেরেছিলেন, এর কয়েক বছরের মধ্যেই নাৎসিরা হাজার হাজার ইহুদি ও অন্যান্য ‘খুঁতো’দের গ্যাস চেম্বারে চালান করবে? ভিয়েনা ছেড়ে যাওয়ার পরামর্শে কান দেননি ফ্রয়েড। বলেছিলেন, এ শহর ছেড়ে যাওয়া তার পক্ষে অসম্ভব। একে তিনি বৃদ্ধ, তায় চোয়ালের ক্যানসারে ভুগছেন এক দশক ধরে। বার বার যন্ত্রণাদায়ক অস্ত্রোপচারের পর কাবু, তবু সিগার ছাড়তে নারাজ জেদি মানুষটি বলেছিলেন, এই অবস্থায় অন্য দেশে ‘রিফিউজি’ হয়ে থাকার কোনও বাসনা তার নেই। তা ছাড়া জার্মানিতে যা হয়েছে, সত্যি কি তা অস্ট্রিয়ায় হবে? কিন্তু সেই দুঃস্বপ্ন সত্যি হল, পাঁচ বছরের মধ্যে। ১৯৩৮ সালের ১৪ মার্চ হুডখোলা মার্সিডিজ়ে চেপে হিটলারের ভিয়েনা প্রবেশের দৃশ্যে আহ্লাদে ফেটে পড়েছিল রাস্তার দু’ধারে কাতারে কাতারে জড়ো হওয়া মানুষ। তাদের হাতে স্বস্তিক চিহ্ন আঁকা পতাকা, মুখে একটাই বুলি, ‘হাইল হিটলার’। অস্ট্রীয় নাৎসিরা, যারা এত দিন ঘাপটি মেরে দিন গুনছিল তাদের প্রিয় ফ্যুয়েরারের, তাদের চোখেমুখে ফুটে উঠেছিল নারকীয় উল্লাস। প্রায় সঙ্গে সঙ্গে শুরু হয়ে গিয়েছিল ইহুদিদের দোকান লুঠপাট, ভাঙচুর, রাস্তায় টেনে নামিয়ে অপমান, মারধর। এতেও ভীত, সন্ত্রস্ত হননি ফ্রয়েড। এমনকি যে দিন বাড়িতে হাজির হল নাৎসি বাহিনী, শোনা যায়, নিজের স্টাডিতে পড়াশোনায় মগ্ন অশীতিপর মনস্তত্ত্ববিদ প্রথমে টেরই পাননি তাদের উপস্থিতি। বুঝতে পেরে ধীর পায়ে হেঁটে এসে, স্থির চোখে তাকিয়ে ছিলেন লুঠতরাজ করা নাৎসিদের দিকে। ফ্রয়েডের সেই বিখ্যাত চাউনিতে নাকি চুপসে গেছিল মস্তানরা। কিন্তু তারও বিশ্বাসের ভিত নড়ে গেল ২২ মার্চ, যে দিন বাড়িতে গেস্টাপো এসে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তুলে নিয়ে গেল তার কনিষ্ঠ সন্তান অ্যানা ফ্রয়েডকে। যদিও অ্যানা এক বারের জন্যও বিচলিত হননি নিষ্ঠুর জার্মান পুলিশকে দেখে। শান্ত ভাবে হুডখোলা গাড়িতে চেপে চলে গিয়েছিলেন সিগমুন্ড-কন্যা, যিনি শুধু পিতার ভালবাসার পাত্রীই নন, ছিলেন তার প্রিয় শিষ্যা ও সচিব, তার নিশ্চিন্ত নির্ভরতার মানুষও। ব্যক্তিগত ব্যাপারে তো বটেই, নিজের সমস্ত চিন্তাভাবনা অ্যানার সঙ্গে ভাগ করে নিতেন ফ্রয়েড। সেই অ্যানাকে গেস্টাপো তুলে নিয়ে যাওয়ায় ভেঙে পড়েছিলেন তিনি। অনেক রাতে অ্যানা ফিরে আসার পর স্বস্তির গভীর নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন বৃদ্ধ পিতা। সেই রাতের পর থেকেই ফ্রয়েড বুঝতে পারেন, ভিয়েনা আর নিরাপদ নয়। অন্য কোনওখানে ডেরা খুঁজতে হবে। কিন্তু যাবেন কোথায়? আমেরিকায় তার বহু ভক্ত। অথচ ফ্রয়েডের সেখানে যাওয়ার ব্যাপারে ঘোর অনীহা। কাছেপিঠের মধ্যে ইংল্যান্ড, সেখানেও তার গুণগ্রাহীর অভাব নেই। তাঁদের মধ্যে সর্বপ্রধান আর্নেস্ট জোন্স ঠিক করলেন, হাল ধরতে হবে তাঁকেই। প্রচুর ব্রিটিশ হোমরাচোমরাদের সঙ্গে ওঠাবসার সূত্রে সরকারকে রাজি করিয়ে ফেললেন জোন্স। অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে মিলল ছাড়পত্র। ১৯৩৮ সালের ৪ জুন ওরিয়েন্ট এক্সপ্রেসে উঠল ফ্রয়েড পরিবার। ট্রেন যখন ধীর গতিতে জার্মানির সীমানা পেরিয়ে ফ্রান্সে প্রবেশ করল, তখন নাকি স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছিলেন ফ্রয়েড। রাইন নদীর ওপর দিয়ে ঝুকঝুক করে চলেছে ট্রেন। জল যেখানে ছুঁয়েছে আকাশের বিস্তার, সেই সীমারেখার দিকে তাকিয়ে মাতৃভাষা জার্মানে ফ্রয়েড উচ্চারণ করেছিলেন তিনটি শব্দ, ‘‘এখন আমরা স্বাধীন।’’ ৬ জুন লন্ডনের ভিক্টোরিয়া স্টেশনে ভিড় জমিয়েছিল লন্ডনবাসী, প্রিয় সিগমুন্ড ফ্রয়েডকে দেখার জন্য। বস্তুত জীবনের শেষ একটি বছর লন্ডনে স্বস্তিতে আর আরামেই কেটেছিল ফ্রয়েডের। আর্নেস্ট জোন্স ফ্রয়েড ও তার পরিবারের জন্য খুঁজে বার করেছিলেন ১৯২০ সালে তৈরি পুরনো দিনের স্থাপত্যরীতিতে গড়া বিশাল এক ম্যানসন। সেই বাড়ি কিনে অনেক অদলবদল করেছিলেন পেশায় স্থাপত্যবিদ আর্নেস্ট, বাবার প্রয়োজনকে মাথায় রেখে। এমনকি সিঁড়ি ভাঙতে ফ্রয়েডের কষ্ট হয় বলে বাড়িতে বসেছিল সুন্দর ছোট্ট লিফ্‌টও। ২০ নম্বর ম্যারস্ফিল্ড গার্ডেনস-এর আলো-হাওয়া মাখা সেই বিশাল বাড়িকে বড় সুন্দর মনে হয়েছিল ফ্রয়েডের। মনে হয়েছিল, এ তাঁদের প্রয়োজনের অতিরিক্ত। লন্ডনের সাধারণ মানুষদের থেকে অকুণ্ঠ ভালবাসা পেয়ে তৃপ্ত বোধ করেছিলেন তিনি। ‘এই ব্রহ্মাণ্ডে আমার শেষ ঠিকানা’ বলে অভিহিত করেছিলেন বাড়িটিকে। লন্ডনের উত্তর-পশ্চিমের হ্যাম্পস্টেড এলাকায় হ্যাম্পস্টেড মেট্রো স্টেশনকে নিচে রেখে ডানে মোড় নিলেই ফিট্‌সজন্স অ্যাভিনিউয়ের গড়ানে রাস্তা। খানিক এগোলেই ম্যারস্ফিল্ড গার্ডেন্স রাস্তার ২০ নম্বর বাড়িতে জীবনের শেষ এক বছরের একটু বেশি সময় কাটিয়েছিলেন সিগমুন্ড , তার কর্মস্থল ও প্রিয় শহর ভিয়েনা থেকে অনেক দূরে। ইংল্যান্ড চলে আসতে বাধ্য হয়েছিলেন আধুনিক সময়ের সবচেয়ে দাপুটে মনস্তত্ত্ববিদ। শেষ জীবন ফ্রয়েড ২৪ বছর বয়স থেকে তামাকজাত ধূমপান সেবন শুরু করেন; শুরুতে তিনি সিগারেট খেতেন, এরপর তিনি সিগার (চুরুট বা বিড়ি) সেবনকারী হয়ে ওঠেন। তিনি বিশ্বা‌স করতেন যে, ধূমপান তার কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি করতো এবং পরিমিত ধূমপানের মাধ্যমে তিনি আত্ম-নিয়ন্ত্রণের চর্চা‌ চালিয়ে যেতে সক্ষম হন। সহকর্মী উইলহেম ফ্লিয়েস-এর কাছ থেকে স্বাস্থ্যগত সতর্ক‌বার্তা‌ পাওয়ার পরেও তিনি ধূমপান অব্যহত রাখেন, এবং অবশেষে মুখগহ্বরের ক্যান্সারে আক্রান্ত হন।Gay 2006, pp. 77, 169 ফ্রয়েড ১৮৯৭ সালে ফ্লিয়েসকে পরামর্শ দেন যে, তামাকসহ অন্যান্য আসক্তিমূলক কর্ম‌কান্ডগুলো হল স্ব‌মেহন নামক "অনন্য চমৎকার অভ্যাস"-এর বিকল্পFreud and Bonaparte 2009, pp. 238–39 ১৯২৩ সালের ফেব্রুয়ারিতে, ফ্রয়েড তার মুখগহ্ব‌রে অতিরিক্ত ধূমপানের ফলে সৃষ্ট লিউকোপ্লাকিয়া নামক একটি মৃদু জমাট মাংসপিন্ড দেখতে পান। ফ্রয়েড শুরুতে তা গোপন রাখেন, কিন্তু ১৯২৩ সালের এপ্রিলে তিনি আরনেস্ট জোনসকে জানান যে, জমাট মাংসপিন্ডটি কেটে বাদ দেওয়া হয়েছে। thumb|upright|গোল্ডেন গ্রিন ক্রিমাটোরিয়ামনামক অন্ত্যষ্টিক্রিয়া সংগ্রহশালায় ফ্রয়েডের দেহভস্ম। ১৯৩৯ সালের সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝির দিকে, ফ্রয়েড তার চোয়ালের ক্যান্সারের কারণে ব্যাপক যন্ত্রণা অনুভব করতে থাকেন এবং চিকিৎসক তার এই যন্ত্রণাকে অনিয়ন্ত্রণযোগ্য বলে ঘোষণা করেন। ফ্রয়েড তার সর্বশেষ পঠিত বই বালজাক-এর লা পিউ দ্য চ্যাগরিন-এ তার নিজস্ব ক্রমবর্ধ‌নশীল ভগ্নদশাকে আরও দ্রুতগতিতে বাড়িয়ে তোলে এবং এর পরপরই তিনি তার বন্ধু চিকিৎসক ও প্রাক্তন সহ-শরণার্থী‌ ম্যাক্স স্কার-এর সঙ্গে স্বেচ্ছামৃত্যুর ব্যাপারে যোগাযোগ করেন, যার সঙ্গে পূর্বে‌ তিনি তার শেষ পর্যা‌য়ের অসুস্থাবস্থা নিয়ে কথা বলেছিলেন। ম্যাক্স স্কার ও কন্যা আনা ফ্রয়েডের সঙ্গে যৌথ পরামর্শ‌ করে অবশেষে ১৯৩৯ সালের ২৩শে ডিসেম্বর অধিক মরফিন গ্রহণের মাধ্যমে স্বে‌চ্ছামৃত্যু হিসেবে আত্মহত্যা করে মৃত্যুবরণ করেন। তার চিকিৎসক জানিয়েছিলেন যে, আত্মহত্যার প্ররোচনায় ধূমপানজনিত কারণে মুখের ক্যান্সারই এর জন্যে দায়ী।Gay, Peter (1988). Freud: A Life for Our Time. New York: W. W. Norton & Company. pp. 650–651. . চিত্রমালা তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:মনস্তত্ববিদ বিষয়শ্রেণী:১৮৫৬-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৯৩৯-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:ইহুদি নাস্তিক বিষয়শ্রেণী:অস্ট্রীয় ইহুদি বিষয়শ্রেণী:নাস্তিক লেখক বিষয়শ্রেণী:ধর্মের সমালোচক বিষয়শ্রেণী:২০শ শতাব্দীর অস্ট্রীয় লেখক বিষয়শ্রেণী:রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য বিষয়শ্রেণী:মনোরোগ বিজ্ঞানের ইতিহাস
আব্রাহাম মাসলো
https://bn.wikipedia.org/wiki/আব্রাহাম_মাসলো
থাম্ব|ডান|আব্রাহাম মাসলো আব্রাহাম মাসলো (; এপ্রিল ১, ১৯০৮ - জুন ৮, ১৯৭০) একজন মার্কিন মনোবিজ্ঞানী। মানুষের চাহিদার ঊধ্বর্গামী শ্রেণিবিন্যাসের জন্য তিনি একটি তত্ত্ব পেশ করেন যার কারণে তিনি বিখ্যাত হয়ে আছেন। এই তত্ত্ব নিডস্‌ হায়ারার্কি থিওরী অব মোটিভেশন নামে সুপরিচিত। ২০০২ সালে প্রকাশিত সাধারণ মনোবিজ্ঞান সমীক্ষার একটি পর্যালোচনায় ২০শ শতাব্দীর দশম সর্বাধিক উদ্ধৃত মনোবিজ্ঞানী হিসাবে মাসলোকে স্থান দিয়েছে। তথ্যসূত্র বিষয়শ্রেণী:মার্কিন মনোবিজ্ঞানী বিষয়শ্রেণী:১৯০৮-এ জন্ম বিষয়শ্রেণী:১৯৭০-এ মৃত্যু বিষয়শ্রেণী:ইউক্রেনীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:মার্কিন নাস্তিক বিষয়শ্রেণী:রুশ ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি বিষয়শ্রেণী:কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী বিষয়শ্রেণী:ইহুদি মার্কিন নাস্তিক বিষয়শ্রেণী:ইহুদি মার্কিন লেখক বিষয়শ্রেণী:মার্কিন মনোবিদ্যা সমিতির সভাপতি
মনস্তত্ত্ববিদের তালিকা
https://bn.wikipedia.org/wiki/মনস্তত্ত্ববিদের_তালিকা
এই তালিকায়, উল্লেখযোগ্য মনস্তত্ত্ববিদ এবং মনোবিজ্ঞানে অবদানকারী অন্তর্ভুক্ত। মনস্তত্ত্ববিদদের নিচে তালিকাভুক্ত করা হলোঃ __NOTOC__ আ আব্রাহাম মাসলো উ উইলিয়াম জেমস ই ইবনে রুশদ ইভান পাভলভ ক ক্যারল গিলিগ্যান জ জঁ পিয়াজেঁ ন নোম চম্‌স্কি ভ ভি এস রামচন্দ্রন ম মার্টিন ডেইলি র রবিন ডানবার স সিগমুন্ড ফ্রয়েড স্টিভেন পিংকার আরোও দেখুন বিষয়শ্রেণী:মনস্তত্ববিদ বিষয়শ্রেণী:মনোবিজ্ঞানী