summary
stringlengths
1
29.6k
genre
stringclasses
7 values
Label
int64
0
6
বাংলা অনুবাদ সাজানো গোছানো না।লাইন গুলা আগে পরে উল্টা পাল্টা সাজানো।
Political
3
কখনও কী আপনার অতীতে ফিরতে ইচ্ছে করেছে? হাজার বছরের পুরনো অতীতে? ইন্দ্রজাল অতীতে ফেরার একটি মায়াময় গল্প। ইন্দ্রজাল সময়ের কিংবা মায়ার জালে আটকে পড়ার গল্প। কী নেই বইটিতে? রহস্য, রোমাঞ্চ, প্রেম, ইতিহাস, দর্শন, মিথ— সব মিলিয়ে কলমের নিখুঁত আঁচড়ে অঙ্কিত এক অনন্য অসাধারণ আখ্যানের নাম ‘ইন্দ্রজাল’। ♦ কাহিনি সংক্ষেপ : গল্পের শুরুটা বিখ্যাত রোমান প্রত্নতত্ত্ববিদ সায়মনকে দিয়ে। বিশেষ কোনো ব্যক্তি নয় সে। প্রত্নতত্বের অনুসন্ধানী অতি সাধারণ যুবক। গ্রিসে এসেছে প্রত্নতত্ত্বের অনুসন্ধানে। প্রায় তিন হাজার বছরের পুরনো একটি জিউস মন্দিরে বহু প্রাচীন প্রত্নতত্ত্বের নিদর্শন বিরাজমান। অনেক বাঁধা ডিঙিয়ে মন্দিরের তলদেশ থেকে একটি বাক্স উদ্ধার করে সে। বাক্সের ভেতর পায় ব্রোঞ্জ নির্মিত, মূল্যবান ধাতু দিয়ে কারুকার্য খচিত একটি দরজা। মোহগ্রস্ত এক দরজা! যে দরজার কাছাকাছি হলেই মাথা ঝিমঝিম করে। আলিঙ্গন করতে ইচ্ছে করে প্রাচীন এই দুয়ারটিকে! দরজার ভেতর দিয়ে সময়ের ফাঁদে পা বাড়ানো। ‘ইসাবেল’ নামক একটি মহামায়ার সাথে জড়িয়ে যাওয়া। মায়ার জাল বিচ্ছেদ করে, সময়ের জাল ভেদ করে সায়মন কী ফিরতে পারবে তার সময়ে? নাকি আটকে থাকবে জুলিয়াস সিজার কিংবা অগাস্টাস সিজারের শাসনামলে? ♦ পর্যালোচনা : সায়মন চরিত্রটিকে যেন মহাকালের প্রতীক হিসেবে আঁকা হয়েছে। মনস্তাত্ত্বিক টানাপোড়েন তার হৃদয়কে বিদীর্ণ করে রেখেছে। অযাচিতভাবে ছুটছে এক মায়ার পেছনে। গভীর ইন্দ্রজালে আটকে গেছে সে। লেখিকা চরিত্রটি এঁকেছেন বেশ বিচক্ষণতার সাথে। যার প্রমাণ মেলে শেষ পৃষ্ঠার শেষ লাইনগুলোতে। অনুসন্ধানী এ যুবক যে দরজার সন্ধান পায়, পুরনো বই ঘেটে জানতে পারে এটি প্রেমের দেবী আফ্রোদিতির জীবনের সাথে জড়িত। অতীত ভ্রমণের এক রোমাঞ্চকর গল্প জড়িয়ে আছে দরজাটির সাথে। সেও অতীতের ফাঁদে পড়ে যায়। একাকীত্ব তাকে গ্রাস করে। “তার এই একাকীত্বের কথা কেউ জানে না। কেউ দেখতে পায় না তার শান্ত চেহেরার আড়ালে বিষাদগ্রস্ত আত্মাটাকে।” ধূসর অতীতে সায়মনকে পরিভ্রমণ করিয়ে ইতিহাসের যে সত্য বর্ণনা বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে সেটিও প্রশংসার দাবি রাখে। জুলিয়াস সিজারের শাসনামল, বিশ্বস্তদের বিশ্বাসঘাতকতা, জুলিয়াস সিজারকে হত্যা, অগাস্টাস সিজারের ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠা এবং তাঁর হাত ধরে এক নতুন রোমের সূচনা, রোমের স্বর্ণযুগের উত্থান। লেখিকা বর্ণনার দক্ষতায় ঠিক সেই সময়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন সূক্ষ্মভাবে। ইসাবেল শ্বাস রুদ্ধ করে রাখা মায়াময় একটি চরিত্র। এই মনে হচ্ছে মরে যাবে, এই ধর্ষিত হবে, এই মেরে ফেলা হবে, এই সায়মনের বুকে লেপটে রবে.... কিন্তু শেষপর্যন্ত হয় কী? খুব জানতে ইচ্ছে করে টোবায়েসরা ইসাবেলকে কী করে? কিন্তু কখনও জানা হবে না। এই জানতে চাওয়ার ইচ্ছেটুকু বোধকরি লেখিকার পরিপক্বতার সুস্পষ্ট প্রমাণ। বার বার চোখ ছলছল করা অনুভূতি জাগিয়ে তোলা ইসাবেল যেন স্বয়ং প্রেমের দেবী আফ্রোদিতি! সায়মন নামের অতি সাধারণ যুবকটির প্রেমে ধীরে ধীরে আসক্ত হয়ে পড়ে সে। কিন্তু সায়মনকে সে প্রেম কিছুতেই স্পর্শ করে না। নাকি গভীর স্পর্শে বুক থেকে কিছুতেই ছাড়তে চায় না তাকে? না হয় মনে মনে সায়মন কেনো বলে, “তোমার মায়াবী চাহনিতে যে তীক্ষ্ণতা রয়েছে; তাতে আমি হাজারবার খণ্ডিত হয়ে যাই।” ♦ প্রতিক্রিয়া : ইন্দ্রজাল একটি শ্বাসরুদ্ধকর গল্প। গভীর ঘোরে আটকে আছি এখনও। যে ঘোর কাটছে না কিছুতেই! এই ধরণের গল্প খুব কমই পড়া হয়েছে। কীভাবে এমন গল্প বলা যায়? লেখিকার দূরদর্শিতা, বিচক্ষণতার আর সুনিপুণতার এক অনন্য স্বাক্ষর ইন্দ্রজাল। এখনও ফিরতে পারছি না সেই পাহাড় থেকে, যেখানে তীর বিদ্ধ এক নিষ্পাপ আত্মা। ফিরতে পারছি না সেই সময় থেকে, যেখানে ইন্দ্রজাল তার মায়ার জালে আটকে রেখেছে ভেতরটাকে। পলক পড়ছে না প্রচ্ছদে থাকা সায়মনের মায়াময় নিষ্পলক চোখজোড়া থেকে। যেন বার বার সায়মন আওড়িয়ে যাচ্ছে— “আমি একজন খ্রিস্টান। কিন্তু এমন এক সময়ে বাস করছি, যেখানে এখনও জেসাসের আগমন ঘটেনি। ভবিষ্যৎ বলতে পারি আমি। না, আমি কোন জ্যোতিষী কিংবা ভবিষ্যৎদ্রষ্টা নই। আমি সায়মন, অতি সাধারণ এক যুবক। জড়িয়ে গেছি এক জালে। যার নাম ইন্দ্রজাল।” মূলত বইটি শেষ করে ফ্ল্যাপের এই লেখাগুলো অনেকবার পড়েছি। তাই আবার সংযোজন করে দিলাম এখানে। কী দারুণ কথাগুলো! গল্পটি শুরু করার কিছুক্ষণ পরই পাঠক বুঝতে পারবেন ফ্ল্যাপের এই লেখাগুলোর মর্মার্থ। রোমান উপনিবেশিক প্রেক্ষাপটে রচিত লেখিকার কাজগুলোকে বলা যায়, বাংলাসাহিত্যে এক নতুন ধারার সংযোজন। পৌরাণিক কাহিনির এইসব গল্প লেখিকা যথোপযুক্ত শব্দের গাঁথুনি দিয়ে অসম্ভব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলেন। শব্দের সম্মোহনীতে হাজার বছরের সেই পুরনো দিনগুলোতে আপনি চলে যেতে বাধ্য হবেন। সহজ-সরল অথচ শক্তিশালী বর্ণনায় কালো হরফের শব্দগুলো আপনার কল্পজগতকে এতো গভীরভাবে আলোড়িত করবে যে, মনের অজান্তে কখন আপনি সেইসব দিনরাত্রিতে ঘুরে বেড়াবেন— টেরই পাবেন না। আমি বলব, এটি জিমি হাইসনের লেখার অন্যতম একটি বৈশিষ্ট্য। বিশ্বাস হচ্ছে না? ‘ইন্দ্রজাল’ হাতে নিয়ে বসে পড়ুন। আপনার সময় এবং অর্থ কোনোটাই অপচয় হবে না বলে আমার দৃঢ়বিশ্বাস।
Thriller
1
এটা আমার পড়া হুমায়ূন স্যারের দ্বিতীয় কিশোর উপন্যাস।এর আগে "বোতল ভূত" নামে আরেকটি কিশোর উপন্যাস পড়েছিলাম।দুইটা বই'ই অসম্ভব সুন্দর। "পুতুল" উপন্যাসটির কেন্দ্রীয় চরিত্রের নাম পুতুল। ছেলেটার বয়স এগারো।হার্টের কি যেন একটা জটিল রোগে ভুগছে সে।সবাই সবসময় তার দিকে করুণার দৃষ্টিতে তাকায়।ব্যাপারটা পুতুল মোটেও পছন্দ করে না।এছাড়াও অসুস্থ হওয়ায় তাকে নানা রকম আদেশ-নিষেধ মেনে চলতে হয়।এটা করা যাবে না,সেটা করা যাবে না,এটা খেতে হবে,সেটা খাওয়া যাবে না,সারাক্ষণ জুতো,গেঞ্জি পরে থাকতে হবে,বাড়ির বাইরে কখনোই বেরোনো যাবে না আরো কত কিছু। পুতুলের বাবার অনেক টাকা।বাবা-মা দু'জনই চাকুরী করে।তাই সারাদিন কাজের লোকেরাই পুতুলকে দেখেশুনে রাখে।বাবা-মার কাছ থেকে যতটুকু আদর সে আশা করে ততটুকু পায় না ও। পুতুল কখনো একা ওদের বাড়ির বাইরে যাই নি।কিন্তু হঠাৎ একদিন সকালে গেট খুলা পেয়ে কাউকে না জানিয়ে বাড়ির বাইরে বেরিয়ে পরে সে।আপন মনে হাটতে হাটতে বাড়ী থেকে অনেক দুরে চলে যায় এবং একসময় ওর সমবয়সী অন্তু নামের এর ছেলের সাথে দেখা হয়।এরপরেই নানান রোমাঞ্চকর ঘটনার সাথে পরিচিত হতে থাকে পুতুল। এদিকে পুতুলকে খুঁজার জন্য পুলিশ তৎপর হয়ে উঠে,মাইকিং আরাম্ভ হয়,খবরেরকাগজ বিজ্ঞাপন ছাপানো হয়,পীরকে খবর দেওয়া হয়.......... *শেষপর্যন্ত পুতুল কি ফিরে আসবে ওর বাবা-মার কাছে ? *পুতুল কি কি রোমাঞ্চকর ঘটনার মধ্য দিয়ে যায় ? ... .. উত্তরগুলো না হয় পাঠকরাই খুঁজে নেবে।
Childrens-Book
2
‘জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুল’ উপন্যাসটির কাহিনী গড়ে উঠেছে একটি গ্রামীণ স্কুলকে কেন্দ্র করে। যেই স্কুলের প্রতিষ্ঠার সাথে জড়িয়ে আছে এক প্রাচীন কিংবদন্তি। উপন্যাসের কাহিনীর বিস্তৃত বিবরণে যাওয়ার আগে এতটুকু বলাই যায়, এই বইটি হুমায়ূন আহমেদের লেখা আর দশটা গতানুগতিক উপন্যাসের থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। ‘জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুল’ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র ফজলুল করিম। তিনি জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের হেডমাস্টার। ফজলুল করিমের মত ন্যায়-নিষ্ঠ শিক্ষক বর্তমান সময়ে খুব কমই দেখা যায়। তার চিন্তা-ভাবনা জুড়ে সবসময়ই স্কুল। কীভাবে স্কুলের উন্নতি করা যায়, কীভাবে ফলাফল আরও ভালো করা যায় এসব ভেবেই তার দিনের বেশিরভাগ সময় কাটে। লেখক এই গল্প নিয়ে ধীরে ধীরে অগ্রসর হওয়ার সময় হঠাৎ করেই আবার ফ্ল্যাশব্যাকে চলে যান। সেখানে আমরা দেখতে পাই, চল্লিশের দশকে জীবনকৃষ্ণ নামে এক ধনী ব্যক্তি এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই স্কুল প্রতিষ্ঠার পিছনের কাহিনীও বেশ চমকপ্রদ। জীবনকৃষ্ণ বাবু হঠাৎ এক সকালে ঘুম থেকে উঠে সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি জনকল্যাণমূলক কাজে তার সম্পদ ব্যয় করবেন। তারপর তিনি এই স্কুল প্রতিষ্ঠা করেন। তারপর আবার উঠে আসে যুদ্ধের সময়ের কথা। আমরা দেখতে পাই, পাকিস্তানী আর্মিরা হিন্দুর নামে স্কুলের নাম দেখে খুব বিরক্ত হয়। তারা এই স্কুলের নাম বদলাতে চায়। কিন্তু তরুণ ফজলুল করিম তাদের বাধা দেন। ফলাফলস্বরূপ তাকে নগ্ন করে স্কুলের মাঠের চারিদিকে ঘোরানো হয়। এই ঘটনায় ব্যথিত হয়ে ফজলুল করিমের অন্তঃসত্ত্বা স্ত্রী পরের দিন মারা যান। এই পর্যায়ে এসে লেখক ফ্ল্যাশব্যাক থেকে আবার বর্তমান সময়ে ফিরে আসেন। আমরা দেখতে পাই, স্কুলের অবস্থা খুব ভালো না হলেও মোটামুটি চলছিল। কিন্তু সমস্যা হয়, যখন স্থানীয় মন্ত্রী নীলগঞ্জ হাইস্কুল নামে আরেকটি স্কুল সেই এলাকায় প্রতিষ্ঠা করেন। নতুন স্কুলের সুযোগ-সুবিধা অনেক বেশি। তাই ছাত্ররা দলে দলে সেই স্কুলে চলে যেতে শুরু করে। আবার সেই স্কুলে শিক্ষকদের বেতনসহ অন্যান্য আনুষাঙ্গিক সুবিধাদি বেশি থাকায় কিছু শিক্ষকও সেখানে চলে যান। এদিকে ফজলুল করিমের ব্যক্তিগত জীবনেও একটা সমস্যা দেখা দেয়। ফজলুল করিমের মেয়েদের বিয়ে হয়ে যাওয়ায় তারা বাহিরে থাকতো। তার বাড়িতে মানুষ বলতে তিনি আর টুকটাক কাজ করার জন্যে রেশমী নামে ২৩-২৪ বছরের একটি মেয়ে। কিন্তু হঠাৎ করে ফজলুল করিমের সাথে রেশমীকে জড়িয়ে নানা রটনা ওঠে। ফজলুল করিম ব্যক্তিগতভাবে বিপর্যস্ত এবং স্কুলের অবস্থাও মোটামুটি বিধ্বস্ত এমন সময় এসএসসি পরীক্ষা সামনে চলে আসে। দীর্ঘদিনের ইতিহাসের সাক্ষী জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুলের টিকে থাকার তখন একমাত্র উপায় হয়ে দাঁড়ায় এসএসসিতে অসাধারণ ফলাফল করা। সে বার বদরুল নামে এক অসাধারণ ছাত্রও পেয়ে যান ফজলুল করিম, যাকে নিয়ে আশা করা যায়। শেষ পর্যন্ত কী হবে ফলাফল? দীর্ঘদিনের ঐতিহ্যবাহী এই স্কুলটি কি টিকে থাকতে পারবে? এই প্রশ্নগুলোর উত্তর পাওয়ার জন্যে পাঠককে এই অসাধারণ উপন্যাসটি পড়তে হবে। হুমায়ূন আহমেদ ‘জীবনকৃষ্ণ মেমোরিয়াল হাইস্কুল’ উপন্যাসে অসাধারণ দক্ষতায় ফজলুল করিমের চরিত্রটিকে উপস্থাপন করেছেন। ফজলুল করিমের প্রতিটি আচরণ এবং কাজের মধ্যে লেখক আদর্শ শিক্ষকের প্রতিচ্ছবি আমাদের সামনে তুলে ধরেছেন। এছাড়া, বাংলাদেশের আনাচে-কানাচে ছড়িয়ে ছিটিয়ে থাকা অসংখ্য ঐতিহ্যবাহী স্কুল বিভিন্ন কারণে আজ ধ্বংসের মুখোমুখি এসে দাঁড়িয়েছে; সেই চিত্রটিও লেখক এই উপন্যাসে অসাধারণ সার্থকতার সাথে তুলে ধরেছেন। হুমায়ূন আহমেদের লেখা ভিন্ন স্বাদের এই উপন্যাসটি শিক্ষানুরাগী সকল পাঠকের কাছেই ভালো লাগবে বলে আমার বিশ্বাস।
Fiction
0
আমড়া এবং ক্র্যাব নেবুলা বইটিকে মুলত বেশ কিছু ছোট গল্পের সমন্বয় বলা যেতে পারে। এই বইটির অনেকগুলো গল্পেরই মুল চরিত্র ছোটরা এবং তারাই সব! একটা দুটা বাদ দিয়ে বাকি গল্পগুলোকে সায়েন্স ফিকশন বলাই যায়! একটা দুটা গল্প পড়ে মনে হতেই পারে, কেন এগুলোকে সায়েন্স ফিকশন বলা হচ্ছে, কারন বেশিরভাগ গল্পেই নেই কোন এলিয়েন বা পঞ্চম মাত্রার কোন অদ্ভুত প্রানের লক্ষন। তবে এই গল্পগুলোতে সায়েন্স এর হালকা মিশ্রনে প্রচুর পরিমানে ফিকশন আছে। এবং সবচেয়ে মজার বিষয়টা হল, এই বই এর সব কাহিনী টিন এজ ছেলে মেয়েদের নিয়ে। প্রথম গল্পের নাম মামা এবং তার ফ্রিজ। এক যন্ত্রবাতিকগ্রস্থ ইঞ্জিনিয়ারের যন্ত্রের সাথে নিত্য ওঠাবসা এবং মান অভিমান দেখানো হয়েছে। ভয়াবহ নানা গল্পটিতে এক কুসংস্কারগ্রস্থ নানা কিভাবে তার নাতিদের উপরে নানারকম অত্যচারের বোঝা চাপিয়ে দেন এবং কিভাবে গল্পের কেন্দ্রীয় চরিত্ররা বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যবহার করে তার কুসংস্কারকেই কাজে লাগিয়ে তা যন্ত্রনার হাত থেকে রেহাই পাবার চেষ্টা করে তাই উঠে এসেছে। ছবি গল্পটি ঠিক যেন এই বইটিতে মানায় না। লেখক নিজের জবানিতে যে ঘটনাটি বলেছেন, সেটাও ঠিক বইটির মুল থিম এর সাথে যায় না। তবে পড়তে মজা লাগবে নি:সন্দেহে। তবে এর বাইরেও অন্যান্য যে গল্পগুলো আছে, ছক্কা; যেখানে এক কিশোর বিজ্ঞানীর কথা উঠে এসেছে এবং সত্যিকার বিজ্ঞানমনস্কতা কি জিনিস তা বোঝানো হয়েছে। বিলু ও তার মৌমাছি গল্পে চমতকারভাবে দেখানো হয়েছে, জানানো হয়েছে মৌমাছিদের জীবন এবং কিভাবে গল্পের নায়ক বিলু মৌমাছিদের নিয়ে তার নিজস্ব জ্ঞান দিয়ে নিজেকে বিপদের হাত থেকে রক্ষা করে। এরকম বেশ কিছু আক‌র্ষনীয় গল্প নিয়ে এই বইটি। আশা করি পড়তে সবার ভালই লাগবে! তবে পাঠক সবচেয়ে মজা পাবেন নি:সন্দেহ যে গল্পটির নামে বইটির নাম করণ, সেটি পড়ে। আমরা এবং ক্র্যাব নেবুলা!
Childrens-Book
2
সিরিয়াল কিলিং নিয়ে পশ্চিমা বিশ্বে রচিত বইয়ের সংখ্যা কম নয়। এই সিরিয়াল কিলিংকে মূল উপাদান হিসেবে ব্যবহার করে রচিত হয়েছে অনেক বেস্টসেলিং উপন্যাস। কিন্তু তার মধ্যে মাইকেল কনেলির দ্য পোয়েট স্বতন্ত্র একটি জায়গা দখল করে আছে। বিশ্বের সেরা ১০০টি রহস্য-উপন্যাসের যে তালিকা করেছে। গুডরিডস ওয়েবসাইটে, সেটারও একদম ওপরের দিকে এর অবস্থান। এর কারণ পাঠক নিজেই বইটা পড়ার পরে উপলব্ধি করতে পারবেন। মাইকেল কনেলিকে হিসেবে। আর দ্য পোয়েট তার শ্রেষ্ঠ কাজ হিসেবে বিবেচিত। আমার নিজের পড়া বইগুলোর তালিকাতেও একদম ওপরের দিকে থাকবে। বইটি। তাই তো বিশাল ব্যপ্তি সত্ত্বেও অনুবাদ করতে গিয়ে উপভোগ করেছি। পুরো সময়টা। শ্ৰদ্ধেয় নাজিমভাইকে ধন্যবাদ এরকম একটি বই অনুবাদের সুযোগ করে দেয়ার জন্যে । তবে একজন ব্যক্তির নাম উল্লেখ না করলে অপরাধ হয়ে যাবে, তিনি সুলেখক তানজীম রহমান। বইটিতে বেশ কয়েক জায়গায় কিছু কবিতা ব্যবহৃত হয়েছে, সেগুলো অনুবাদের ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রয়েছে তার। সেজন্যে তার কাছে কৃতজ্ঞ। আশা করি সবার ভালো লাগবে আমাদের বাতিঘর পরিবারেরর এই প্ৰয়াস।
Thriller
1
নভেম্বরের ১ তারিখ, শনিবার। আম্মা একটা দুঃস্বপ্ন দেখে জেগে উঠলেন। স্বপ্নে দেখেন যে বাঁশের চারটি তাঁবু পাশাপাশি রাখা। আম্মা জিজ্ঞেস করলেন, ‘কাদের এই তাঁবু?’ কে যেন উত্তর দিল, ‘এই তাঁবুগুলো তাজউদ্দীন আহমদ, সৈয়দ নজরুল ইসলাম, মনসুর আলী ও কামরুজ্জামান সাহেবদের জন্য।’ স্বপ্নের মধ্যেই আম্মার মনে হলো যে বাঁশের তাঁবু দেখা তো ভালো না। আব্বুর পছন্দের খাবার রেঁধে টিফিন কেরিয়ারে ভরে সেদিনই আইনজীবীদের সাথে নিয়ে আম্মা একাই জেলে গেলেন আব্বুর সঙ্গে দেখা করতে। আম্মা আইনজীবীদের সহায়তায় হাইকোর্টের মাধ্যমে আব্বুর আটকাদেশকে অবৈধ চ্যালেঞ্জ করে আব্বুকে মুক্ত করার জন্য নথিপত্র জোগাড় করেছিলেন। হত্যাকারী সেই আর্মি–মোশতাক সরকার আব্বুকে দুর্নীতিতে জড়ানোর নিরন্তর চেষ্টা করেও দুর্নীতি তো দূরের কথা, একটা সাধারণ নিয়ম লঙ্ঘনের অভিযোগও দাঁড় করাতে পারেনি। আব্বুকে মুক্ত করার জন্য ৫ নভেম্বর আদালতে রিট পিটিশন ওঠার কথা। আম্মা আব্বুকে সেই খবর জানালেন। কিন্তু আব্বু যেন কেমন চিন্তামগ্ন রইলেন। তিনি আম্মার ডাক নাম ধরে বললেন, ‘লিলি, আজ রাতে ডায়েরির শেষ পাতা লেখা হবে। সেই সঙ্গে শেষ হবে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস রচনা।’ তারপর বললেন, ‘আর বোধহয় বাঁচব না।’ জেলে আব্বুর সাথে আম্মার সেই শেষ সাক্ষাৎ।.... হ্যা, ইতিহাসের ন্যাক্কারজনক ঘটনাগুলোর মধ্যে অন্যতম এই ঘটনা এভাবেই বর্ণনা করেছেন লেখিকা। সবচেয়ে বড় বেদনা তখনই, যখন প্রকাশের সব ভাষা হারিয়ে যায় নিমেষেই। কেমন যেন যন্ত্রচালিতের মতোই রিমিকে নিয়ে ফিরে এলাম আমাদের বাসায়। মনে হলো সারা দিন পাওয়া খবরগুলো কোনো অদ্ভুত দুঃস্বপ্ন। জেলে পাগলাঘণ্টি, গোলাগুলি, আব্বু নিহত!!! এবার হয়তো বাসায় কেউ ভালো খবর নিয়ে আসবেন—এমনি নিভু নিভু আশায় বুক বেঁধে আম্মার পাশে এসে আমরা দাঁড়ালাম। এক এক করে আম্মাকে ঘিরে মানুষের ভিড় জমে উঠতে থাকল। আম্মা বারান্দার চেয়ারে হেলান দিয়ে বসা। বাকরুদ্ধ। বেদনাক্লিষ্ট। সন্ধ্যা ছয়টার দিকে ময়েজউদ্দীন আহমেদসহ আব্বুর বেশ কজন সহকর্মী ও বন্ধু নিয়ে এলেন পাকা খবর। জেলখানায় আব্বু ও তাঁর তিন সহকর্মীকে হত্যা করা হয়েছে। সংবাদদাতাদের দিকে আম্মা তাকিয়ে রইলেন কেমন নিস্পন্দ দৃষ্টিতে। আমি সেই মুহূর্তে ছুটে আব্বু ও আম্মার ঘরে ঢুকে ওনাদের খাটে বসে কান্নায় ভেঙে পড়লাম। কতক্ষণ ওভাবে অশ্রুপ্লাবনে সিক্ত হয়েছিলাম জানি না। পানির ঝাপটায় দুঃখ ধুয়ে যায় না, তার পরও বৃথা আশায় বেসিন খুলে সমানে চোখেমুখে পানির ঝাপটা দিতে থাকলাম। ঘরের বাইরে বেরিয়ে দেখি আম্মাকে ড্রইংরুমের সোফায় বসানো হয়েছে। এলোমেলো চুলে ঘেরা আম্মার চোখেমুখে কী নিদারুণ হাহাকার! একপর্যায়ে আম্মা ডুকরে কেঁদে বললেন, ‘এই সোনার মানুষটাকে ওরা কীভাবে মারল! দেশ কী হারাল!’ গভীর রাতে বড় ফুফুর ছেলে মুক্তিযোদ্ধা শাহিদ ভাইয়ের কাছে জেল কর্তৃপক্ষ আব্বুর মরদেহ হস্তান্তর করে। ৪ নভেম্বর দিবাগত রাত ১২-২৫ মিনিটে পুলিশের ট্রাকে করে জেলখানা থেকে চিরনিদ্রায় শায়িত আব্বু ঘরে ফিরলেন। সঙ্গে ফিরল আব্বুর রক্তমাখা ঘড়ি, জামা, স্যান্ডেল ও বুলেটে ছিদ্র হওয়া টিফিন ক্যারিয়ার, যাতে করে ১ নভেম্বর আম্মা শেষ খাবার নিয়ে গিয়েছিলেন। আব্বুর কুরআন শরিফটি, যা তিনি জেলে পাঠ করতেন, তা বুলেটে ঝাঁঝরা হয়ে গিয়েছিল, সেটা আর ফেরত দেওয়ার অবস্থায় ছিল না। আব্বুর মহামূল্যবান সেই কালো চামড়ায় সোনালি বর্ডারওয়ালা ডায়েরিটি, যাতে তিনি লিখছিলেন মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস এবং ভবিষ্যতে বাংলাদেশ কীভাবে চলবে তার দিকনির্দেশনা, সেটা রহস্যজনকভাবে জেলেই হারিয়ে যায়।.... হ্যা পড়তে পড়তে যে কখন আপনার চোখে জল চলে আসবে বুঝতেই পারবেন না...। ভাবতে বসবেন এতো কলঙ্কময় অধ্যায় আমরা পার করে এসেছি....!!! ইতিহাসের নিষ্ঠুরতম জেলহত্যাকাণ্ডের ওপর প্রথম একটি গবেষণাধর্মী গ্রন্থ বাংলাদেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দিন আহমদের কন্যা শারমিন আহমদের লেখা।‘১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারে মুক্তিযুদ্ধের নেতৃত্বদানকারী চার জাতীয় নেতা সৈয়দ নজরুল ইসলাম, তাজউদ্দীন আহমদ, এম মনসুর আলী ও এ এইচ এম কামরুজ্জামানের নির্মম হত্যাকাণ্ড ঘটে। মানবতা লংঘনকারী ওই নির্মম হত্যাকাণ্ড নিয়ে দলমতের ঊর্ধ্বে উঠে বস্তুনিষ্ঠভাবে গবেষণা এবং বিশ্লেষণ না করা ও তার থেকে শিক্ষা না নেবার কারণে আমরা আজও সত্যিকারের এক সভ্য রাষ্ট্ররূপে পরিগণিত হতে পারিনি। যে কারণে বাংলাদেশ আজও লাভ করেনি মানসিক স্বস্তি ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা। এই বিষয়গুলো নিয়ে নির্মোহভাবে ও যুক্তি তথ্যের আলোকে মৌলিক গবেষণা আমাদের দেশে খুব কমই হয়েছে । আজকের প্রজন্ম যারা সেই সময়টি সম্বন্ধে জানে না বা তাদেরকে সঠিকভাবে জানাতে ব্যর্থ হয়েছি, বিশেষত: তাদের জন্যই সেই ইতিহাসের অতি সংক্ষিপ্ত এই বর্ণনা তুলে ধরা হয়েছে এই বইয়ে। জেলহত্যা তদন্ত কমিশনের সদস্য বিচারপতি কে এম সোবহান এবং ওই সময়ে কারাগারে থাকা আওয়ামী লীগ নেতা আব্দুস সামাদ আজাদ, রায়ের বাজার আওয়ামী লীগের সেক্রেটারী মহসিন বুলবুল এবং সেনাবাহিনীর ব্রিগেডিয়ার (অব:) আমিনুল হক বীরউত্তম প্রমুখের সাথে ১৯৮৭ সালে সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে ও কেন্দ্রীয় কারাগারের সার্বিক পরিস্থিতির আলোকে গবেষণামূলক এ গ্রন্থ রচিত হয়েছে। সাক্ষাৎকারগুলোর মাধ্যমে রচিত প্রবন্ধ ছিল জেল হত্যা বিষয়ে বাংলাদেশের প্রথম গবেষণাভিত্তিক লেখা। (তথ্য ও কথা সংগ্রহীত)
Political
3
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা নাম: শান্তা পরিবার লেখক:মোহম্মদ জাফর ইকবাল ধরণ:কিশোর উপন্যাস প্রকাশনা:অনন্যা মূল্য:১৫০৳ সার সংক্ষেপ: শান্তা এক এতিম মেয়ে,ছোটবেলা থেকে ফুপুর বাসায় ফার্নিচারের মতো মানুষ হওয়া অভিমানী শান্তার মনে জন্মায় নিজের বাচ্চাদের স্নেহের ছায়ায় মানুষ করার আকাঙ্খা।ফলে শান্তা পড়ালেখা শেষ করেই বিয়ে করে ফেলে তার সাধাসিধা বন্ধু শওকতকে।এরপর তার মাতৃত্বের প্রকাশ ঘটাতেই যেন শান্তার কোলজুড়ে আসে একে একে ৫টা বাচ্চা।শান্তার সেই বাচ্চাদের(শাঁওলী,সাগর,বন্যা,সুমন,ঝুমুর) ও স্বামী শওকতকে নিয়ে গড়ে তোলা সাজানো গোছানো পরিবারের কাহিনীই এই উপন্যাস। ইউনিভার্সিটি থেকে প্রথম হওয়া শান্তা বাচ্চাদের অনেক ভালোবাসা ও সময় দেওয়ার জন্য কখনোই বাইরে কাজ করতে যায় নি,সবার ধারণা বাচ্চাদের কিভাবে মানুষ করতে হয় তা শান্তার থেকে ভালো আর কেউ জানে না।কিন্তু হঠাৎ এক ঝড়ে এই সংসারের সবকিছু ভেঙে পড়ে।কি ছিল সেই ঝড়?তাই বইয়ের মূল কাহিনী। শান্তার ছায়ায় মানুষ হওয়া ছেলেমেয়েরা নিজেদের সেই ঝড়ে গুছিয়ে নেয়,সবাই মিলে শুরু করে নতুন সংসার।দিন চলে যায়,রাঙা দাদুর মতো স্বার্থপর,জাহেদের মতো একরোঁখা বা আফতাব চাচার মতো উগ্রপন্থী মানুষের ও আবির্ভাব ঘটে উপন্যাসে।কিন্তু সবকিছুকেই নিমিষে ফুঁ দিয়ে উড়িয়ে দেয় শান্তার একেকটা অংশরা। উপন্যাসের শেষে এসে দেখা যায় সে ঝড়টা যেন মিলিয়ে যায়।শান্তা সেই চিরচেনা রূপে ছেলেমেয়েদের ভালোবাসায় ভরিয়ে দেয়।কিন্তু তা কি বাস্তব না স্বপ্ন?না পুরো ঘটনাই কোনো স্বপ্ন?আসলে কি ঘটে শান্তার পরিবারে?জানতে হলে পড়ে ফেলতে হবে আনন্দ-বিষাদে ভরা এই অসাধারণ উপন্যাসটি। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ রিভিউ লেখার জন্য পুরো উপন্যাসটি আবার পড়লাম।পড়ে বুঝতে পারলাম,বয়স যাই হোক না কেন জাফর ইকবাল স্যারের বইয়ের আবেদন একটুও কমে নি,কমতে পারে না।আমি সেই কৈশোরের মতোই কেঁদেছি,হেসেছি...কিন্তু এই ভালোবাসার উৎস খুঁজে পাই নি।তাই এই বইয়ের রেটিং আমি দিব না।তবে হ্যাঁ,যেসব বইপোকারা আমার মতো "শান্তা পরিবার" বা এই ধরনের ক্লাসিক কিশোর উপন্যাস পড়ে তাদের পাঠক জীবন শুরু করেছেন তাদের জন্য আমার আজকের রিভিউটা উৎসর্গ করলাম। :-)
Childrens-Book
2
রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা রিভিউ ০৩ লেখক: স্টিগ লারসন অনুবাদ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন মিকাইল ব্লমকোভিস্ট, পেশায় সে একজন সাংবাদিক। বিয়ার গ্যাং নামক ডাকাত এর গ্যাং এর পতন তার মাধ্যমেই হয় যা তাকে রাতারাতি তাকে তারকা বানিয়ে ফেলে। সাংবাদিক জীবন এ চলতে গিয়ে হুট করে দেখা হয় পুরোনো এক বন্ধু লিন্ডবার্গের সাথে তার ই প্ররোচনায় ওয়েনারস্ট্রমের বিষয়ে উৎসাহী হয়। যা কাল হয়ে দাড়ায় তার সাংবাদিক জীবনে সব সত্য জানার পরও প্রমানের অভাবে কিছুই করতে পারেনা উল্টো একপর্যায়ে মানহানি মামলায় সব হারাতে বসে। ব্যাক্তিগত জীবনে প্রেমিকা এরিকা বার্গার, সাবেক স্ত্রী মনিকা, আর মেয়ে কে নিয়ে। লিসবেথ সালান্ডার, অসম্ভব প্রতিভা সম্পন্ন একটি মেয়ে। মিল্টন সিকিউরিটির মত সুইডেনের অন্যতম বিশ্বস্ত ফার্মে ফ্রিল্যান্সার হিসেবে রিসার্চের কাজ করে। অদ্ভুত এই মেয়ের চালচলন থেকে শুরু করে সব ই আবেগহীন। ফ্যাকাশে চেহারা, ছেলেদের মত ছোটো করে ছাটা চুল,নাক আর ভুরতে রিং রোগাপটকা শরীর তীক্ষ্ণবুদ্ধিসম্পন্ন এই মেয়েটি খুব সহজেই তার প্রতিভা দিয়ে কোম্পানির সিইও এর নজর কারে এবং পুরো কোম্পানি তে সবচেয়ে উজ্জল রিসার্চার হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হয়। ব্লমকোভিস্ট যখন মামলায় সাজা পেয়ে মানসিক ভাবে বিপর্যস্ত তখনই অপ্রত্যাশিত ভাবে অন্য একটি কাজের প্রস্তাব সে পায়। হেনরি ভ্যাঙার বিরাশি বছর বয়সি এক বৃদ্ধ যে কিনা এককালের বিশাল জনপ্রিয় কোম্পানি ভ্যাঙার ইন্ড্রাস্টির মালিক। জীবনের এই শেষ বয়স টাও তার কাটে অসীম এক দোটানায়। তার সেই দোটানা আর তার পরিবারের অসমাপ্ত ইতিহাস এর কিনারা করার প্রস্তাব ই পেলো মিকাইল। সেই রহস্যের সমাধান করতে গিয়েই পরিচয় হয় লিসবেথ সালান্ডার এর সাথে। রহস্য ক্রমশ ই জটিল হয়...কেন হেনরি ভ্যাঙার এর ঠিকানায় প্রতিবছর তার জন্মদিনের দিন খুবি দুষ্প্রাপ্য ফুল রুবিনেট আসে ফেম করা? কোথেকে আর কে পাঠায় সেটা?!! আার কেন সেটা তখন থেকে আাসে ঠিক যখন থেকে তার নাতনি হ্যারিয়েট নিখোজ!!! তেতাল্লিশ বছর ধরে নাতনির খোজ করে যাচ্ছেন। আর ঠিক ততদিন ধরেই প্রতি জন্মদিন এ পাচ্ছেন প্রেসড করা এই একই ফুলের ফ্রেম! সে রহস্য ভেদ করতে গিয়েই অদ্ভুত এই মেয়ের সাথে পরিচয় হয় মিকাইল এর। তারা এক হয়ে তিনটি ভিন্ন ভিন্ন মিশন এ নামে! তারা কি শেষ পর্যন্ত সফল হয়েছিল কিনা জানতে হলে অপেক্ষা করতে হবে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত! অসম্ভব সাসপেন্স আর মাদকতা পুর্ণ আটকে রাখার মত একটি থৃলার এটি। বিশাল,বহুস্তর বিশিষ্ট স্বকীয় প্লট পাঠক কে বিমোহিত করতে বাধ্য।
Thriller
1
'কিলিয়ে ভর্তা বানানো মানে হল আদর যত্নে রাখা' লাইনটা একটা সাই-ফাই থেকে নেয়া। বিশ্বাস করা একটু কঠিনই বটে। সাধারণ সায়েন্স ফিকশনের শুরুই যখন হয় বিশাল এক ল্যাবে পড়ে থাকা বিজ্ঞানী নিয়ে সেখানে এই লেখার শুরু সিনটেথিক বৃষ্টিতে ভিজতে থাকা দুজন ডিপ্লোমাধারী চোরকে দিয়ে। টুকি এবং ঝা। দুজন চোর। জাফর ইকবাল স্যারের ভাষায় তাদের দুজনকে যোগ করে গড় করা হলে দুটো পূর্ণাঙ্গ মানুষ পাওয়া যাবে। বিশাল এক অপারেশন শেষে পুলিশের হাত থেকে বাঁচতে দুজন আশ্রয় নেয় ১৮০ তলার বিল্ডিংএ। আর বিল্ডিং থেকে বের করে দেয় দুজন মানুষ রিচি এবং ফ্রাউলকে। যারা ছিলেন অস্ত্রবিজ্ঞানী। বিপত্তির শুরু যখন তারা জানতে পারে এই বিল্ডিংটার টয়লেট উল্টো করে ঝুলানো। তারা তাদের মাথা খাটিয়ে বের করে এটা মহাকাশযান। কিন্তু ততক্ষণে বেশ দেরি করে ফেলেছে তারা। এক অপারেশন শেষে পালাতে গিয়ে তারা নেমে যায় আরেকটি (প্রায়) দুঃসাহসিক অভিযানে। যেখানে তাদের সঙ্গী হাবাগোবা রোবট 'রোবো' .. বিভিন্ন গ্রহ আর বিভিন্ন অভিযান। কখনো রোবটদের হাসাতে শেখা, কখনো রিচি ও ফ্রাউলের বেশে যুদ্ধ করা, কখনো নারীবাদী সমাজে আশ্রিত হওয়া সবশেষে একদিন তারা পৃথিবীর কাছাকাছি চলে আসে। কিন্তু তখনই তাদের সামনে চলে আসে বিটকেলে একটা তথ্য। কি হয়েছিল টুকি এবং ঝা এর সাথে? জানার জন্য নিশ্চয় বইটা সংগ্রহ করা লাগবে। . পাঠ প্রতিক্রিয়া - প্রচলিত অর্থে যে সায়েন্স ফিকশন তার থেকে খানিক সরে এসেই বইটা লিখেছেন ড.মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। রম্য এবং সায়েন্স ফিকশন দুটো মোটামুটি দু'মাথার বিষয় হলেও তাদের নিয়ে মালা গাঁথবার সাহস দেখিয়েছেন স্যার। আর সেক্ষেত্রে স্যারের মার্ক অবশ্যই দশে বার। বইয়ের প্রতিটা পাতায় যেমন হাসি ছিল, ছিল উৎকন্ঠাও। এরপর কি হবে, এরপর কি হবে এমন একটা ভাব জাগিয়েছিলেন প্রথম লাইনে। যার শেষ কখনোই হয়নি। আমার নিজের কাছে বইটা অনেক কিছুই। মন খারাপের বিকেল বলুন বা বিরক্তিকর অপেক্ষা কিংবা ইনসোমনিয়ার রাত 'টুকি ও ঝায়ের (প্রায়) দুঃসাহসিক অভিযান' সবসময় আপনার পাশে থাকবে। এক নজরে - বই - টুকি ও ঝায়ের (প্রায়) দুঃসাহসিক অভিযান। লেখক - মুহাম্মদ জাফর ইকবাল। প্রকাশ - অনুপম প্রকাশনী। জনরা - সায়েন্স ফিকশন। দাম - ৯০/- (রকমারি ডট কম) রেটিং - ৫/৫
Science-Fiction
4
'দ্য সিক্রেট রহস্য' বইয়ের লেখা কি সেই রহস্য? বব প্রক্টর আপনি সম্ভবতঃ বিস্মিত হয়ে বসে ভাবছেন কি সেই রহস্য? কিভাবে সে কথা বুঝলাম তা আমি আপনাকে বলব। আমরা সকলে একই অসীম শক্তির সঙ্গে কাজ করি। আমরা প্রত্যেকেই একই নিয়মের সাহায্যে নিজেদের পরিচালিত করি। মহাবিশ্বের প্রাকৃতিক নিয়ম এতটাই যথাযথ যে মহাকাশযান বানাতে আমাদের কোনো কষ্ট হয় না। আমরা চাঁদে মানুষ পাঠাতে পারি, এবং এক সেকেন্ডের এক ভগ্নাংশের যাথাযাথ্যের দ্বারা আমরা ঠিক করতে পারি নেমে আসার সময়। ভারত, অস্ট্রেলিয়া, নিউজিল্যান্ড, স্টকহম, লন্ডন, টরেটো, মন্ট্রিয়াল বা নিউইয়র্কে—আমরা সকলেই সেই একই শক্তির সাথে কাজ করি, একই নিয়মে। তা হল, আকর্ষণের নিয়ম! আকর্ষণের নীতি হল সেই রহস্য! আপনার জীবনে যা কিছু আসছে আপনিই তাদের আকর্ষণ করে আনছেন। আপনার মনের মধ্যে যে ছবি আপনি ধরে রেখেছেন তার দ্বারাই আকর্ষিত হচ্ছে। আপনি যা চিন্তা করছেন ঠিক তাই হচ্ছে। আপনার মনের মধ্যে যা কিছু ঘটছে আপনি তাকেই নিজের কাছে আকর্ষণ করছেন। ‘আপনার প্রতিটি ভাবনাই হল সত্য-প্রকৃত শক্তি’ আলোচ্য সূচি রহস্য প্রকাশিত কি সেই রহস্য একই রকম বস্তু পরস্পরকে আকর্ষণ করে ভালোকে আকর্ষণ করুন দূর করুন মন্দকে আপনার মনের শক্তি রহস্য সরলীকৃত ভালোবাসা হলো শ্রেষ্ঠ আবেগ রহস্য কিভাবে প্রয়াগে করবেন? সৃজন প্রক্রিয়া রহস্য এবং আপনার শরীর আগে থেকে রচনা করুন আপনার সুদিন শক্তিশালী প্রক্রিয়া কৃতজ্ঞতা একটি সবল প্রক্রিয়া মনের দৃষ্টিতে দেখা শক্তিশালী প্রক্রিয়া শক্তিশালী প্রক্রিয়া সক্রিয় হয়ে ওঠে ধন এর রহস্য প্রাচুর্যকে আকর্ষণ করুন সমৃদ্ধির প্রতি দৃষ্টি নিবদ্ধ করুন টাকা পেতে হলে টাকা দিন সম্পর্কের রহস্য আপনার কাজ হলো আপনাকে ঠিক করা স্বাস্থ্যের রহস্য হাসি হলো সেরা ঔষধ পরিপূর্ণতার ভাবনা ভাবুন কোনো কিছুরই নিরাময় অসম্ভব নয় জগৎ-সংসারের রহস্য মহাবিশ্বের ভাণ্ডার অফুরন্ত আপনার জন্য রহস্য আপনি আপনার অতীত নন! আপনার ভাবনা সম্পর্কে সচেতন হোন জীবনের রহস্য আপনার চমৎকারিতুকে আলিঙ্গন করুন লেখকদের জীবনকথা
Motivational
6
হরিশংকর জলদাস একট নাম নয়। একটা রচনা। তা হলো জলপুত্রদের রচনা। দহনকালের কেন্দ্রে দাড়িয়েছে বঞ্চিত লাঞ্চিত জেলেসম্প্রদায়, আছে তাদের প্রতিবাদ আর প্রতিশোদের গল্প। সেই সাথে লেপ্টে আছে মুক্তিযুদ্ধ। এসবের বর্ণনাই হলো, অর্ক। পতেঙ্গার জেলেপল্লীটি তখন জ্বলতে থাকে পাকসেনাদের নির্বিবাদ অত্যাচারে। একসময় ঘুরে দাড়ায় মানুষ গুলো মুক্তির নেশায়। কতোটা মজেছিলাম এই বইয়ে বলা মুসকিল। এত সুন্দর বর্ণনা ভঙ্গি আর ভাষাশৈলী!যা সত্যিই অসাধারণ! পুরো উপন্যাসের চিত্র চোখে ভেসে উঠেছিল আমার। বিশেষ করে চোখ দুটি ভিজেছিলো শেষ পৃষ্ঠাগুলোতে। চন্দ্রকলার শেষ দুটি বাক্য, "বাআজি অলরে! আঁর পোয়া রাধানাথ। আঁর একমাত্র বুগর ধন। আঁতুর। হাঁডিত নো পারে। কোন অপরাধ নোগরে। আঁর পোয়ারে নো বাইন্ধ্যো, নো মাইয্যো।" কি আকুতি! জেলেপল্লীর এক দরিদ্র পরিবারের সন্তান দিবাকর। অন্যান্য ছেলেরা যখন পড়াশোনা বাদ দিয়ে বাবার সাথে জলে জাল ফেলছে দু'মুঠো অন্নের আশায়, দিবাকর তখন পড়াশোনা করে অনেকদূর যাবার স্বপ্নে বিভোর। বাবা তাকে নিয়ে বেশ সন্দিহান ছেলেটা কদ্দূর যেতে পারবে। এইসময়ে আলোকবর্তিকা নিয়ে এগিয়ে আসেন স্কুল হেডমাস্টার। নতুন স্বপ্নের সারথি হয়ে যাত্রা শুরু হয় দিবাকরের। মুক্তিযুদ্ধ, দেশমাতৃকার প্রতি অদম্য ভালোবাসা নিয়ে দিবাকর যাত্রা শুরু করে। গল্পের মাঝে একধরণের আচ্ছন্নতায় ধরে রাখতে বেশ পারঙ্গম হরিশংকর জলদাসের "অর্ক" নিয়ে যাবে এক অনাস্বাদিত ভুবনে। বাংলা সাহিত্যের প্রতিষ্ঠিত ও অবিসংবাদিত সাহিত্যিক মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখার সঙ্গে মানের তুলনায় না গিয়েও এটা নিঃসন্দেহে বলা যায়, ‘অর্ক’ উপন্যাস জেলেজীবনের একেবারে গভীরে ঢুকে গেছে প্রতিটি পরিচ্ছদেই। এর প্রথম কারণ লেখক নিজে এ সমাজের। তাই এ সমাজ দেখা ও দেখানোর জন্য তার নিজের জীবনের খেরোখাতাই যথেষ্ট। দ্বিতীয় কারণ স্থানীয় ভাষার নিপুণ ব্যবহার।
Fiction
0
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_আগস্ট_২০১৯ বইয়ের নাম: মধুরাত; লেখক: ইমদাদুল হক মিলন; প্রকাশক: এশিয়া পাবলিকেশনস; ধরন: উপন্যাস; পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৬০; মুদ্রিত মূল্য: ৫০ টাকা মাত্র। বাড়ির মেয়ে হঠাৎ করে একদিন বিকেলে বান্ধবীর বাসায় যাওয়ার কথা বলে বাড়ি থেকে বেরিয়ে রাতে বাড়ি ফিরে আসেনি, কথাটা যেন কেমন অসামাজিক শোনায়,তাই না? হ্যাঁ, ঠিক এটাই ঘটেছিলো ইমদাদুল হকের "মধুরাত" উপন্যাসটিতে। উপন্যাসটির মাত্র ৬০ পৃষ্টায় সমাপ্তি। তবুও এই সংক্ষিপ্ত পৃষ্ঠা যেন ফুটিয়ে তুলেছে একটা পরিবারের বাস্তব জীবনযাত্রার স্বচ্ছ প্রতিচ্ছবি। উপন্যাসের মূল চরিত্র সেতু। বি.এ শ্রেণিতে পড়ে। যৌবনের পরিপূর্ণ ছাপ তার শরীরের সর্বত্র বিদ্যমান। গায়ের রং যেন দুধে আলতা, ঠোট দুটি যেন গাছের কচি কিশলয়ের মতো, আর হাসলে যেন বিলের জলে ঢেউ খেলে। পরিবারের সদস্যদের সাথে থাকে এক মফস্বল শহরে। পরিবারের সদস্য বলতে আছে তার মা, বাবা,ভাই বাবু আর একজন কাজের লোক। সবাইকে নিয়ে তাদের সোনালী সংসার। দিব্যি কেটে যাচ্ছিল দিনগুলো। সেতু ছিল এক সুবোধ বালিকা। কোনোদিন সে তার বাবা-মায়ের কথা অমান্য করে কোন কিছু করেনি,কোনো সিদ্ধান্ত ও গ্রহণ করেনি,ইচ্ছা করলেই হুট করে কোথাও চলে যায় না,গেলেও অনুমতি নিয়ে যায়। বাবা-মায়ের অবাধ্যতা কি হয়তো সে কখনো তা জানে না,জানতে চেষ্টা ও করেনি। কখনো অবাধ্য ও হয় নি। তাইতো সেতু সব সময় তাদের কাছে ভালোবাসার পাত্রী। সে কোথাও যাওয়ার অনুমতি চাইলে ই যেতে বলতো। কারণ তার বাবা-মায়ের,তার উপর যথেষ্ট আস্থা ও বিশ্বাস ছিলো। হঠাৎ একদিন সে তার মাকে তার বান্ধবী বেবীদের বাসায় যাবার কথা বলে বাসা থেকে বের হলো। যাওয়ার আগে বললো," আমি সন্ধ্যার আগে ই ফিরে আসবো।" তার মা ও কিছু বললো না বা তাকে বাধা দিলো না। কারণ সে জানে,সেতু কখনো মিথ্যা বলে না তাকে। সময় মতো ই সে সবসময় বাসায় ফিরে আসে। কিন্তু সেদিন এলো না। কিন্তু কেনো? কি এমন হলো যে সেদিন সে সন্ধ্যা এমনকি রাতে ও বাসায় ফিরলো না? কি হলো তার সাথে? ও হ্যা, আপনারা হয়তো জানেন না যে উপন্যাসটি হুসেইন মোহাম্মদ এরশাদের শাসনামলের সময় কালকে ইঙ্গিত করে রচিত। আর সেতু যেদিন বাড়ি থেকে বের হয়, তখন বাজে বেলা ৩:০০। সেদিন বিকাল ৫ টা থেকে ছিলো কারফিউ। তাহলে কি সেতু তার বান্ধবীর বাসায় আটকে গিয়েছিলো কারফিউ এর কারণে? ওদিকে সেতুর বাবা-মা আর ভাই বাবু খুব চিন্তায় পড়ে গেলো। এখনো ফিরছে না কেন? মা,বাবুকে বললো,"তুই গিয়ে একটু বেবিদের বাসায় খোজ নিয়ে আয় আর সেতুকে বাড়িতে নিয়ে আয়।" মায়ের আদেশে বাবু ছুটে যায় বেবি আপাদের বাসায়।গিয়ে বেবির কথা শুনে আকাশ থেকে পড়ে,পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যায়,টেনশন শুরু হয়ে যায় বাবুর। কারণ সেতু নাকি বেবি আপাদের বাসায় আসেনি। কথা শুনে ভড়কে যায় বাবু, মুখ শুকিয়ে যায়। সেতু আপা এখানে আসেনি? তাহলে গেলো কোথায়। কোনদিন তো সেতু এমন করে নি। তবে আজ কি হলো। সেতু কোনদিন মা-বাবাকে একটা মিথ্যা ও বলেনি। তাহলে আজ হঠাৎ এমন কি ঘটলো যে সেতু বাসা থেকে মিথ্যা কথা বলে বের হলো? এমন অনেক কথা নিজের মনে ভাবতে থাকে বাবু। হঠাৎ বেবি আপার কথায় তার চৈতন্য হয়। বেবি বলে,"আচ্ছা,সেতুর আরেক বান্ধবী আছে।নাম নীরা। তাদের বাসায় খোজ নাও। সেতু ওখানে ও যেতে পারে।" তৎক্ষণাৎ বাবু ফোন করে নীরাদের বাসায়। কিন্তু তাদের কথা শুনে বাবু যেন আরেকবার বিধ্বস্ত হয়। সেতু সেখানেও যায়নি। বেবি ও খুব চিন্তায় পড়ে যায়। কোথায় গেলো সেতু? কোনো সমস্যা হলো না তো সেতুর? বেবি তখন তাদের আরো ২জন বান্ধবীর কথা বলে,নাম পারভীন আর শাহিনা। দেরি না করে তাদের বাসায় ও ফোন দেয় বাবু। কিন্তু বিধি বাম, ফলাফল শূন্য। সেখানে ও যায়নি সে। তাহলে গেল কোথায়? বাবু আর দেরি না করে দৌড়ে যায় বাড়িতে, ছুটে যায় বাবা-মায়ের কাছে। বাবুকে দেখে তারা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে। কিন্তু তারা জানতো না যে বাবু সেতুর অবস্থান জানতে ব্যর্থ হয়েছে। মা খুশি মনে জিজ্ঞাসা করে," সেতু কি করে এখনো বেবিদের বাসায়?" বাবু চুপ করে থাকে, কোনো উত্তর দেয় না সে। বাবা ও তাকে একই প্রশ্ন করে। তারপর বাবু মুখ তুলে তাদের দিকে তাকিয়ে হতাশা নিয়ে বলে," কোথাও আপুর খোজ পাইনি।" কথাটা শুনে বিধ্বস্ত হয় মতিন সাহেব (বাবুর বাবা) আর বাবুর মা। তারা যেন নিজের কানকে বিশ্বাস করতে পারছিলো না। খোজ পাওয়া যায়নি মানে? তাহলে কোথায় ও? এ প্রশ্নের কোনো জবাব দিতে পারে না বাবু। কারণ এই প্রশ্নের কোনো উত্তর যে তার জানা নেই। ততক্ষণে রাত হয়ে গেছে। কোনো বান্ধবী বা আত্নীয়ের বাসায় যায়নি, তাহলে সেতু এখন কোথায়? গেলো ই বা কেন? গেলে ও মিথ্যা কথা বলে কেন সেখানে গেলো? গেলেও এখনো ফিরে আসে নি কেন? কোনো সমস্যা হয়নি তো মেয়েটার? নাকি সে ও স্বীকার হয়েছে নরপশুদের থাবার? এসব কথা ভেবে শিওরে ওঠে মতিন সাহেব। মনের মধ্যে ঘুরপাক খেতে থাকে প্রশ্নগুলো কিন্তু কোনো উত্তর খুজে পায় না। প্রিয় পাঠক, তাহলে কি সত্যিই সেতুর সাথে খারাপ কিছু হয়ে গেছে?নাকি... হ্যাঁ,এসব প্রশ্নের উত্তর আমি বলে দিয়ে এই উপন্যাসের স্বাদ আস্বাদন থেকে আপনাদের বঞ্চিত করতে চাই না। সেতুর সাথে কি এমন হলো যে,সেতু বাড়ি ফিরলো না? এসব প্রশ্নের উত্তর আর সেতুর সাথে ঘটে যাওয়া অজানা ঘটনা জানতে হলে আজই সংগ্রহ করুন "মধুরাত"। এইটুকু নিশ্চিন্ত মনে বলতে পারি, "মধুরাত" উপন্যাসের প্রতিটা পৃষ্ঠা আপনার কাছে উন্মোচন করবে নতুন অজানাকে আর আপনার মনে সৃষ্টি করবে এক আশ্চর্য ধরনের অনুভূতি।
Fiction
0
বইঃ ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা লেখকঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ধরণঃ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী প্রকাশনীঃ সময় প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি বইমেলা, ২০১৩ প্রচ্ছদঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল পৃষ্ঠাঃ১২৪ মূল্যঃ ২০০ টাকা প্রেক্ষাপটঃ কোনো একটা ছোট শহরে দুইটা স্কুল কাছাকাছি অবস্থিত। একটা স্কুলের নাম অক্সব্রীজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, হাইফাই স্কুল সেটা। অক্সফোর্ডের "অক্স" আর ক্যামব্রীজের "ব্রীজ" নিয়ে দুটি যোগ করে স্কুলের নাম হয়েছে অক্সব্রীজ। সেই স্কুলের একেবারে উল্টা স্কুল হচ্ছে হাজী মহব্বতজান উচ্চ বিদ্যালয়, ল্যাটাপ্যাটা স্কুল। এই স্কুলে কোনো পড়াশোনা হয়না। শিক্ষক, ছাত্রছাত্রী যার যখন ইচ্ছে আসে, চলে যায়। কোনো নিয়মকানুন নাই। সেই স্কুলের ক্লাস এইটে পড়ে ইবু, বগা, রূম্পা, ফারা। ইবু এখানে গল্পকথক। তার ভাষাতেই কাহিনী এগোয়। বগার একটু খিদে বেশি, বুদ্ধিশুদ্ধি কম। রূম্পা ডেঞ্জারাস মেয়ে, দুনিয়ার কিছুকেই সে ভয় পায়না। ভয়ডরশূন্য একটা মেয়ে সে, শরীরে দয়ামায়াও কম। ফারা আবার রূম্পার ঠিক বিপরীত। খুবই নরম স্বভাবের মেয়ে সে, হাশিখুশী, মিষ্টি স্বভাবের, পৃথিবীর সবার জন্যে তার ভালোবাসা। শুধুমাত্র কোনো এক বিচিত্র কারণে সে বেগম রোকেয়াকে দেখতে পারেনা। এই হাজী মহব্বতজান উচ্চ বিদ্যালয়ের ক্লাস এইটে ভর্তি হয়ে আসে নতুন একটা ছেলে, যার চোখে চশমা এবং চশমার পাওয়ার অনেক বেশি। জানা গেলো, ছেলেটার নাম মিঠুন এবং সে অক্সব্রীজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুলের ছাত্র ছিলো। কোনো একটা এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে সে স্কুলের ল্যাবরেটরি ধ্বসিয়ে ফেলেছে এবং তাকে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। তাই তাকে এ স্কুলে ভর্তি করেছে তার মা। মিঠুনের সাথে বন্ধুত্ব হতে সবার দেরি হয়না। মিঠুনও সবার সাথে খুব তাড়াতাড়ি মিশে যায়। মিঠুনের কাছ থেকেই জানা যায়, যে এক্সপেরিমেন্ট করে মিঠুন অক্সব্রীজের এক অংশ বিধ্বস্ত করেছে, সে এক্সপেরিমেন্ট থেকে সে একটা ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা পেয়েছে। এবং ব্ল্যাকহোলের বাচ্চাটা সে সাথে নিয়েই ঘোরে সবসময়। বুক পকেটে একটা হোমিওপ্যাথিক ওষুধের মিষ্টি মিষ্টি ট্যাবলেট দেয়ার ছোট্ট একটা শিশির মধ্যে ব্ল্যাকহোলের বাচ্চাটাকে রেখেছে সে। বাইরের কাউকে এ বিষয়ে সে জানায়নি। এই ব্ল্যাকহোলের বাচ্চাটাকে ব্যবহার করে মিঠুন একদিন প্লাজমা বানিয়ে ফেলে। আন্তঃস্কুল বিজ্ঞানমেলায় সেই প্লাজমা দেখিয়ে প্রথম পুরষ্কারও পেয়ে যায় জীবনে কোনোদিন পুরষ্কার হিশেবে একটা কলমও না জেতা হাজী মহব্বতজান উচ্চ বিদ্যালয়। সেই খুশিতে হেডমাস্টার একদিনের ছুটিও দিয়ে দেন সবাইকে। ব্লাকহোলের বাচ্চাটাকে ব্যবহার করে ফ্লাইং সসারও বানিয়ে ফেলে মিঠুন। সেই ফ্লাইং সসারে ইবু, মিঠুন, রূম্পা, ফারা, বগা একদিন আকাশে ওড়ার সময়ে ইন্টেলিজেন্সের হাতে ধরা পড়ে যায়। প্রকাশ হয়ে পড়ে ব্ল্যাকহোলের বাচ্চার কথা। তারপর? মিঠুন কেন চেয়েছিলো ব্ল্যাকহোলের বাচ্চার কথা কেউ যেন না জানতে পারে? আর লিখলাম না। বাকিটা বইয়ে পড়ে নেবেন। নিজস্ব মতামতঃ সত্যি বলতে বইটার জনরা তে "বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী" লেখা হলেও এখানে বৈজ্ঞানিক টার্ম খুব কমই এসেছে। সাই-ফাই মানেই যে দাঁতভাঙা সব ইকুয়েশন, প্রজেক্ট, ডিডাকশন এনে বইয়ের পৃষ্ঠা মজবুত বানাতে হবে...এমন মাথার দিব্যিও অবশ্য কেউই দেয়নি। সে কারণেই বইটা আমার বেশ প্রিয়। আর, কোনো জিনিস প্রিয় হলে, সে বইয়ের চুলচেরা বিশ্লেষণ করা যায়না। ত্রুটিগুলোকে এড়িয়ে যেতে ইচ্ছে করে। তবুও, যতটা সম্ভব নিরপেক্ষভাবে লিখছি। বাকিটা, আপনাদের বিবেচনা। কলেজে থাকতে বইটা পড়েছিলাম। কলেজজীবনে অনেক বই-ই পড়ার সুযোগ হয়েছিলো। বয়স যত বাড়ছে কাজের, লেখাপড়ার জটিলতা এসে ভীড় করছে। আগের মত গোগ্রাসে বই গেলা এখন আর হয়না। সমীকরণ ক্রমশ জটিল হয়ে যাচ্ছে। সমস্যা হলো, দুই-তিন বছরের মধ্যে এ বইটা আর পড়া হয়নি। অনেককিছু ভুলে ভুলে যাচ্ছিলাম। ভাবলাম, রিভিউ যখন লিখতেই হবে, বইটা আবার পড়া যাক। পড়লাম। পড়ে প্রথমবারের মতই ভালো লাগলো। আমার মনে আছে, বইটা কিনে আমি একটানা ৭ বার পড়েছিলাম "ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা।" বইয়ের নামটাই তো অদ্ভুত। বাঘের বাচ্চা, গাধার বাচ্চা... টাইপের কথা তো আমরা অহরহই শুনি। তাই বলে ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা!!! বইয়ের নাম আর ওপরের প্রচ্ছদ দেখেই বই কেনার তাগিদ জোরদার হয়েছিলো। তাছাড়া, জাফর ইকবাল স্যারের বই, কিনতে তো হতোই। ওপরের প্রচ্ছদও কিন্তু লেখকেরই করা ;) কাহিনী হয়তো আহামরি না, খুঁজলে আরো অনেকগুলো বইয়ের সাথে হয়তো কনসেপ্টের মিল পাওয়া যাবে। কিন্তু, এতকিছু ভাবলে, এতকিছু চিন্তা করলে আসলে বইয়ের আসল মজাটাই পাওয়া যায় না। বই উপভোগ করতে পারলাম কী না, সময়টা ভালো কাটলো কী না, দিনশেষে এটাই তো বড় কথা। এত কিছু ভাবার আসলেই কী কোনো প্রাসঙ্গিকতা আছে? তবে, এ কয়দিন ধরে জাফর ইকবাল স্যারের বইগুলো আবার পড়ে রিভিউ দিতে গিয়ে কয়েকটা বিষয় দেখলাম। স্যারের বেশিরভাগ কিশোর উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্রগুলো ক্লাস এইটে পড়ে। স'তে সেন্টু, ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা, দীপু নাম্বার টু, আমার বন্ধু রাশেদ... মিলিয়ে নিতে পারেন। মস্তিষ্ক যদি খুব বেশি প্রতারণা না করে, "হাত কাটা রবিন"এও রবিন ক্লাস এইটে পড়তো, এটা শিওর হয়ে বলা যাচ্ছেনা। আবার, প্রায় সব উপন্যাসেই একজন গল্পকথক থাকে যার নাম ইবু। ইকবাল থেকে ইবু এসেছে বলেই আমার ধারণা। আগেই বলেছি "ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা"র কোনো ত্রুটি ধরা আমার পক্ষে হয়তো সম্ভব হবেনা। রিভিউ'র এ পর্যন্ত সেটাই হয়েছে। একটাও ত্রুটির কথা উল্লেখ করিনি একবারও। এবার করছিঃ আন্তঃস্কুল বিজ্ঞানমেলার জন্যে হাজী মহব্বতজান উচ্চ বিদ্যালয়ের হেডমাস্টার মিঠুনদের ৫০০০ টাকা দিয়েছিলেন। পরে, সে টাকার উল্লেখ প্রসঙ্গে বইয়ে লেখা হলো, হেডমাস্টার ১০০০০ টাকা দিয়েছেন। তাড়াহুড়োয় হয়তো লেখক বিষয়টা খেয়াল করেননি। অবশ্য এটা সেরকম আহামরি ভুলও না। শেষ করছি "উৎসর্গ" অংশটা লিখে। আমার রিভিউতে আমি মূলত "উৎসর্গ" অংশটা আনিনা। তবে এ বইয়ের উৎসর্গপত্রটা এত ভালো লেগেছে, না লিখে পারছিনা। উৎসর্গ প্রিয় নিষাদ ও নিনিত (একদিন তোমরা জানবে তোমার বাবা এই দেশের মানুষকে যত আনন্দ দিয়েছে তার একটু খানিও যদি কারো জীবনে ফিরে আসে তাহলে এক জন্মেও সেটি শেষ হবেনা) বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই গল্পের জাদুকর, প্রিয় হুমায়ূন আহমেদকে। "ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা"র রকমারি লিঙ্কঃ https://www.rokomari.com/book/62146/ব্ল্যাক-হোলের-বাচ্চা
Science-Fiction
4
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #ডিসেম্বরঃ ২২ বইঃ বোতল ভূত লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃ প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা ধরণঃ শিশুতোষ উপন্যাস প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ পৃষ্ঠাঃ ৬৪ রকমারি মূল্যঃ ৯০টাকা . হুমায়ূন আহমেদ একাধারে ঔপন্যাসিক,ছোটগল্পকার,নাট্যকার এবং গীতিকার।তিনি সর্বজনীন লেখক ছিলেন।তাঁর সহজ সরল ভাষায় তিনি যেমন বড়দের জন্য বই লিখেছেন,ঠিক তেমনি ছোটদের জন্যও লিখেছেন অসাধারণ কিছু বই।বোতল ভুত বইটি ঠিক তেমনি একটি শিশুতোষ বই।শিশু এবং কিশোরদের উপযোগী একটি অসাধারণ বই। . রিভিউঃ উত্তম পুরুষে রচিত এই উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র এক ছোট কিশোর,নাম হুমায়ূন।তার ক্লাসে মুনির নামের ছেলেটা বেশ অদ্ভুত ধরণের।কারো সঙ্গেই কথা বলে না।সে পেছনের বেঞ্চিতে বসে আর ক্লাসের সময় জানালার বাইরে তাকিয়ে থাকে।স্যার কিছু জিজ্ঞেস করলেই সে এমন ভাব করে তাকিয়ে থাকে দেখে মনে হয় একটা কথাও বুঝতে পারছেনা।এজন্য শিক্ষকদের কাছে তাকে অনেক প্রহার হতে হয়,কিন্তু কিছুতেই কিছু হয়না।তাই শিক্ষকরা সবাই মোটামুটি হাল ছেড়ে দিয়েছেন।একদিন অঙ্কের শিক্ষক একটা জটিল অঙ্ক করতে দেন ওদের,চৌবাচ্চার অঙ্ক।কারো মাথায় অঙ্কটার কিছুই ঢুকেনা,তাই কেউ সাহসা করতে পারেনা।কিন্তু হুমায়ূন অবাক হয়ে দেখে মুনির ফট করে অঙ্কটা করে ফেলে।মুনির পাশে বসা হুমায়ূনও তার কাছ থেকে দেখে অঙ্কটা করে ফেলে।তারপর নিয়ম অনুযায়ী ডান হাত উঁচু করে রাখে।কিন্তু কেউ হাত তুলছে না দেখে হুমায়ূন চট করে হাত নামিয়ে ফেলে,কারণ কেউ হাত না তুললে তাকেই অঙ্কটা স্যার বোর্ডে করতে বলবেন।এদিকে স্যার সেটা দেখে হুংকার দেন।অবশেষে মুনির ও হুমায়ূন দুজনের খাতায় অঙ্ক দেখে কে কার থেকে দেখেছে সেটা জিজ্ঞেস করেন।বশির নামের এক হাড় বজ্জাত ছেলে সত্যিটা বলে দেয়।মুনির কথা না বলার জন্য ও হুমায়ূন দেখে দেখে লেখার জন্য শাস্তি পায়।এই মুনির হঠাৎ করে হুমায়ূনের কাছে প্রস্তাব রাখে সে বোতল ভুত পুষবে কিনা।হুমায়ূন বোতল ভুত কি সেটা ভেবেই অবাক হয়!কৌতূহলবশতই হুমায়ূন মুনিরের সাথে বোতল ভুত আনতে যেতে রাজি হয়ে।গাছপালায় ঢাকা শেওলা পড়া দো'তলা বাড়িতে তারা উপস্থিত হয়। বাড়ির নাম শান্তিনিকেতন।দরজায় কড়া নাড়তেই বেরিয়ে আসে সন্ন্যাসীর মতন চেহারার এক লোক।লোকটি দেখতে অবিকল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতন।পরনে আলখাল্লার মত লম্বা পোশাক।লোকটি কবিতাও লেখে,তার লেখা একটা কবিতা তাদের পড়ে শোনায়।হুমায়ূনের কবিতাটা আগে কোথাও শুনেছে বলে মনে হয়,কিন্তু মনে পড়ে না।লোকটি বেশ অদ্ভুত।সেই অদ্ভুত লোকটিই ছোট্ট শিশিতে ভরে দিল ভুতের বাচ্চা।সেই ভুতের বাচ্চাকে সঙ্গে করে হুমায়ুন ঘরে নিয়ে আসার পর থেকেই ভূতের অদ্ভুত সব কর্মকাণ্ড শুরু হয়।কি সেই কাণ্ড?কিন্তু ভূত বলতে তো কিছু নেই তাহলে এই অদ্ভুত কর্মকাণ্ড ঘটালো কোন ভুত?আর শেষ পর্যন্ত ভূতেরই বা কি হয়েছে?ভুতের কার্যকলাপ কি শেষ পর্যন্ত বন্ধ হয়? . পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ বইটি প্রথম পড়েছিলাম ক্লাস নাইনে থাকতে।তখন খুব ভালো লেগেছিলো।মজা পেয়েছিলাম খুব।তখন ভেবেছিলাম ইশ বোতল ভুত বলে সত্যি যদি কিছু থাকতো!লেখাপড়ায়-বিমুখ হুমায়ুনের বোতল ভুত নিয়ে কাণ্ড কারখানা মজা লেগেছে।এটা শিশু কিশোরদের বই হলেও বড়দেরও ভালো লাগবে আশা করি।ছোটখাটো একটা বই।এক বসাতেই শেষ করার মতো।যদি নিছক মজা পেতে চান তাহলে এই বইটি ভালো লাগবে। রেটিং: ৩.৫/৫
Childrens-Book
2
Boi ta porar por mone hoyese, Ashok onek boro kisu.. Ashok is best forever.. R kisu baje daronao dur hoyese...
Political
3
বইটি প্রতিটি মুসলিমের যুবকের জন্য... প্রয়োজন। অমুসলিমদের থেকে সতর্ক থাকার জন্য। ধন্যবাদ লেখক সাহেব কে‌‌, এমন একটা বই উপহার দেয়ার জন্য।
Political
3
#রকমারিরিভিউপ্রতিযোগিতা বই-একাত্তোরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত মধ্য আগস্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর লেখক-কর্ণেল শাফায়াত জামিল পৃষ্ঠা-১৫১ মূল্য-৩০০ সাহিত্য প্রকাশ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের একজন বীর মুক্তিযোদ্ধা কর্নেল শাফায়েত জামিল। স্বাধীনতা যুদ্ধে তার সাহসিকতার জন্য বাংলাদেশ সরকার তাকে বীর বিক্রম খেতাব প্রদান করে। শাফায়াত জামিল ১৯৬৪ সালে পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টে সেকেন্ড লেফটেন্যান্ট হিসেবে কমিশনপ্রাপ্ত হন। মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি চতুর্থ বেঙ্গল রেজিমেন্টে কর্মরত ছিলেন। এই রেজিমেন্টের অবস্থান ছিল কুমিল্লা সেনানিবাসে। সম্ভাব্য ভারতীয় আগ্রাসনের কথা বলে পাকিস্তানি সেনারা এই রেজিমেন্টের দুটি কোম্পানিকে ১৯৭১ সালের ১ মার্চ ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় পাঠায়। একটি কোম্পানির নেতৃত্বে ছিলেন তিনি। ২৬ মার্চ পাকিস্তানি সেনাদের আক্রমণের সংবাদ পেয়ে তিনি তাঁর ও অপর কোম্পানির সবাইকে নিয়ে বিদ্রোহ করে মুক্তিযুদ্ধে যোগ দেন। প্রতিরোধপর্বে আশুগঞ্জ-ব্রাহ্মণবাড়িয়া ও আখাউড়া-গঙ্গাসাগর এলাকায় যুদ্ধ করেন। এরপর ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের মতিনগরে যান। তাঁকে তৃতীয় ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্টের অধিনায়ক হিসেবে দায়িত্ব দেওয়া হয়। তিনি দেওয়ানগঞ্জ, সিলেটের ছাতকসহ আরও কয়েক স্থানে যুদ্ধ করেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধের পরে, জামিল লেফটেন্যান্ট কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং বীর বিক্রম পদক লাভ করেন। ১৯৭৪ সালে তিনি কর্নেল পদে উন্নীত হন এবং ৪৬ পদাতিক ব্রিগেডের কমান্ডার নিযুক্ত হন । ৩ নভেম্বর, ১৯৭৫ তারিখে তিনি এবং খালেদ মোশাররফ খন্দকার মোস্তাক আহমদের বিরুদ্ধে একটি অভ্যুত্থান ঘটান । ৬ নভেম্বর মোস্তাক রাষ্ট্রপতির পদ থেকে সরে দাঁড়ান এবং বিচারপতি আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম তার স্থলাভিসিক্ত হন। ৭ নভেম্বর এক পাল্টা অভ্যুত্থানে খালেদ মোশাররফকে হত্যা করা হয় এবং কর্নেল জামিল গ্রেফতার হন । জামিল ১৯৮০ সালের ২৬ মার্চ সেনাবাহিনী থেকে অবসরপ্রাপ্ত হন । মুক্তিযুদ্ধ আর যুদ্ধ পরবর্তী ৭৫ রের রক্ত ঝড়া দিন গুলো নিয়ে তিনি বাংলাদেশের রাজনীতির টালমাটাল এক ইতিহাসের অবতারনা করেন "একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ, রক্তাক্ত আগস্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর" নামক গ্রন্থে । লেখক এই বই তিনটি অংশে রচনা করছেন। ১ম অংশ ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে। তিনি বেঙ্গল রেজিমেন্টের বিদ্রোহ বর্ণনার মধ্য দিয়ে বইয়ের শুরু করেন। এবং পরবর্তিতে যুদ্ধ সম্পর্কিত বিভিন্ন আলোচনা । তার নেতৃত্বে মুক্তি বাহিনী গঠন এবং পাকিস্তানি সৈন্যদের সাথে সামনাসামনি যুদ্ধে অংশগ্রহনের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। অংশ গুলো-বিদ্রোহ,শুরু হলো প্রতিরোধ যুদ্ধ, তৃতীয় বেঙ্গলের দায়িত্ব গ্রহণ, স্বদেশের মাটিতে যুদ্ধ ,সিলেট অঞ্চলে অভিযান ও চূড়ান্ত যুদ্ধ। এভাবে বিভক্ত। ২য় এবং ৩য় অধ্যায়ে ১৯৭৫ সালের বাংলাদেশের রাজনীতিতে সেনাবাহিনীর যে হস্তক্ষেপ তা নিয়ে বর্ণনা হয়। অধ্যায় দুটি রক্তাক্ত মদ্য-আগস্ট ও ষড়যন্ত্রময় নভেম্বর নামে বিভক্ত। যুদ্ধ পরবর্তী সামরিক অবস্থা, ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধু হত্যার সময় থেকে ৩ এবং ৭ নভেম্বর দুটি সেনা অভ্যূত্থান এর বিভিন্ন গুরুত্ব পূর্ণ ঘটনা উল্ল্যেখ করেছেন। তিনি এরকম কিছু কাহিনী তুলে ধরেন, যেখানে বলা হয় - মুক্তিযুদ্ধের পর এমন কিছু বাঙালী সেনাবাহিনী সৈন্য সামরিক বাহিনীতে যুগ দেন, যারা যুদ্ধের সময় বাংলাদেশের সাথে বেইমানী করেছে। যুদ্ধের পর এরাই মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহন কারী সামরিক বাহিনীর বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। এর ফলে বাংলাদেশের মুক্তিযোদ্ধ অনেক সেনা অফিসার প্রাণ হারিয়েছেন। এছাড়া আরো বলেন যুদ্ধের সর্বশেষ দিন পর্যন্ত যে বাঙালি মেজর পাকিস্তানিদের প্রতি বিশ্বস্ত থেকে বাঙালি নিধনে অংশ গ্রহণ করেছিলেন তার পরবর্তীতে মন্ত্রীত্বলাভ করার মতো ঘটনা। এরশাদকে রূপ উম্মেচন করেছেন। যুদ্ধকালীন সময় এবং যুদ্ধ পরবর্তি বাংলাদেশে সামরিক বাহিনীতে তার ভূমিকা লেখক উল্ল্যেখ করেছেন। বঙ্গবন্ধু হত্যা, জিয়ার বিরুদ্ধে চট্টগ্রামে অসফল অভ্যূত্থান ও সেই অভ্যূত্থানের কথিত নেতা মেজর জেনারেল মঞ্জুরসহ অসংখ্য মুক্তিযোদ্ধা সেনা অফিসারকে বিচারের নামে হত্যার পিছনে এরশাদ যে সংশ্লিষ্ট ছিলেন তার ব্যপারে স্পষ্ট ইঙ্গিত দিয়েছেন। জিয়ারউর রহমান এর ব্যপারে যতোটা সমালোচনা করেছেন, তাতে তার ইতিবাচক এবং নেতিবাচক দুই রূপের প্রকাশ হয়। লেখক বেশ নিরপেক্ষ ভাবে মুক্তিযুদ্ধ থেকে ৭ নভেম্বর পর্যন্ত জিয়া অবস্থান বর্ণনা করেছেন। কিন্তু এতো সব অভিযোগ করেছেন অত্যন্ত শালীন এবং ভদ্র ভাষায়। তিনি অভিযোগ ও দোষারোপ দুই ই করেছেন। কিন্তু কাউকে অসম্মান নয় । কর্ণেল শাফায়েত জামিল মুক্তিযুদ্ধ শুরু করেছিলেন মেজর খালেদ মোশারফের কমান্ডে। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধের অধিকাংশ দায়িত্ব পালন করেছেন জেনারেল জিয়াউর রহমানের জেড ফোর্সের অধীন। রাজনীতি ও অভ্যূত্থান ও পাল্টা অভ্যূত্থানের এক পর্যায়ে কর্নেল শাফায়াত জামিল জেনারেল জিয়া কর্তৃক বিচারের মুখোমুখী হয়েছিলেন। অথচ বইয়ের কোথাও তিনি জিয়াকে অসম্মান করেননি। মোটকথা দেশ স্বাধীন হওয়ার পর সেনাবাহিনীর ভিতরে বাহিরে যে রাজনৈতিক নোংরা খেলা চলছিলো, তাতে ১৫ আগস্ট স্বপরিবারে মুজিব হত্যা করে, কতিপয় সেনাবাহিনীর অফিসার নিজেদের দেশবিধাতারূপে প্রকাশ করে, দেশকে নেতা শুন্য করবার যে নোংরা চিন্তা ভাবনা তার রগরগে বর্ণনা দিয়েছেন। অনেকে বলে থাকেন স্বাধীনতার ২৫ বছর পর অনেকটা কৈফিয়ত দিতেই লেখক এই বইয়ের অবতারনা করেন। যাই হোক, নতুন প্রজন্মকে যুদ্ধ পরবর্তি ঘৃন্য হত্যাকান্ডের ইতিহাস জানতে এই বই সাহায্য করবে।
Political
3
বইঃ সেরিনা লেখকঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ধরণঃ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী প্রকাশনীঃ সময় প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি বইমেলা, ২০১৫ প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ পৃষ্ঠাঃ১২৫ মূল্যঃ ২২৫ টাকা কাহিনীসংক্ষেপঃ যাত্রীবাহী ট্রেনের লাইনে সমস্যা হওয়ায় হওয়ায় হঠাৎ করে অজ্ঞাত একটা গ্রামে নেমে পড়েন ডাক্তার শামীম। মূলত, ট্রেনের জানালা থেকেই গ্রামটাকে দেখে তার কেন যেন খুব ভালো লেগে যায়। যতক্ষণে লাইন ক্লিয়ার না হচ্ছে, সে এই গ্রামটা ঘুরে দেখার সিদ্ধান্ত নেয়। এই গ্রামেই আকস্মিকভাবে সে পেয়ে যায় একটা ছোট বাচ্চাকে, যে কী না পানির নীচে দিব্যি শ্বাস নিতে পারে ঘন্টার পর ঘন্টা, মাছের মত, কোনো সমস্যা ছাড়াই। শামীম তার নাম দেয় সেরিনা, নিয়ে আসে নিজের বাসায়। এর আগে শামীম অবশ্য তার স্ত্রী, মেয়েকে হারিয়েছে এক দুর্ঘটনায়, সেরিনার মধ্যে শামীম আবার বেঁচে থাকার প্রেরণা খুঁজে পায়। বাবা-মেয়ের জীবনটাও দিব্যি কাটছিলো। সেরিনার এই বিশেষ ক্ষমতা অবশ্য বাইরের কেউ জানতোনা। শামীম অত্যন্ত যত্নের সাথে বিষয়টা সবার কাছ থেকে গোপন রেখেছিলো। কিন্তু, একদিন তা অপ্রত্যাশিতভাবে প্রকাশিত হয়ে পড়ে। স্কুলের এক সাঁতার প্রতিযোগিতায় সেরিনার এই পানিতে শ্বাস নেয়ার, পানিতে মাছের মত বেঁচে থাকার অদ্ভুত ক্ষমতাটা প্রকাশ হয়ে যায়। সাঁতারের সেই ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে সারা বিশ্বে। বিদেশের একদল লোক এই ভিডিওটা দেখে সেরিনার ওপরে এক্সপেরিমেন্টের জন্যে, সেরিনাকে কিডন্যাপ করতে বাংলাদেশে চলে আসে। তারপর? তারপর কী হয়? নিজস্ব মতামতঃ কাহিনীসংক্ষেপ পড়ে আলেক্সান্ডার বেলায়েভের “উভচর মানব” এর সাথে বইটিকে কিছুটা রিলেট করা যাচ্ছেনা? বইটির লেখক নিজেই অবশ্য বিষয়টি পরিষ্কার করেছেন। তিনি “উভচর মানব” থেকে অনুপ্রাণিত হয়েই বইটি লিখেছেন, তা তিনি নিজেই স্বীকার করেছেন। এবার আসি বইয়ের কাহিনীর ব্যাপারে। কাহিনী গতানুগতিক, প্রথম থেকে ধীরে ধীরে এগোবে, শেষে টিপিক্যাল একটা ক্লাইম্যাক্স। এই তো, এর বেশি না। তবে,বইয়ের মধ্যাংশে বাবা- মেয়ে’র অকৃত্রিম ভালোবাসার বিষয়টা অবশ্যই ভালো লেগেছে। ক্লাইম্যাক্সটা হাস্যকর লেগেছে, বলতে প্রচন্ড ইচ্ছে করছে, সেখানে কী হয়েছিলো। স্পয়লার হয়ে যাবে, তাই কিছু বলছিনা। বইয়ের ক্লাইম্যাক্স পড়লে আপনারা নিজেরাই বুঝতে পারবেন। কাহিনী ভালো না লাগলেও, বইটা আমার কাছে অমূল্য রত্নবিশেষ। বইয়ের পেছনে মজার একটা কাহিনীও আছে। বইমেলায় গিয়েছি, অনেকগুলো বই কিনে ব্যাগভর্তি করে বাসার দিকে ফিরছি। হঠাৎ দেখি, মেলার এক অংশে প্রচন্ড ধুলো উড়ছে, তীব্র ভীড়। কৌতূহলী হয়ে গেলাম ভীড়ের কাছাকাছি। গিয়ে দেখি, ভীড়ের মধ্যমণি মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার। সবাই হুড়োহুড়ি করে তাঁর অটোগ্রাফ নিচ্ছে, কেউ ফটোগ্রাফও নিচ্ছে। আমি স্যারকে আগে সামনাসামনি বহুবার দেখলেও তাঁর লেখা নতুন বইতে তাঁরই অটোগ্রাফ আগে নেয়া হয়নি। সে বইমেলায় তাঁর দুটি বই বেরিয়েছিলো। তাম্রলিপি থেকে "গ্রামের নাম কাঁকনডুবি" আর সময় থেকে "সেরিনা।" "গ্রামের নাম কাঁকনডুবি" আগেই কিনে ফেলেছি। কী বিপদ! দৌড়ে গেলাম সময় প্রকাশনীতে। খুব তাড়াতাড়ি করে কিনে ফেললাম সেরিনা, সেদিনই মেলায় প্রথম এসেছে বইটা। বই হাতে নিয়ে ৫০০ টাকার একটা নোট দিলাম, ওরাও ভাংতি দিলো, আমি না গুনে দৌড় দিলাম আবার ভীড়ের মাঝখানে, ততক্ষণে অনেকগুলো টিভি চ্যানেলের ক্যামেরা চলে এসেছে স্যারের আশেপাশে। ক্যামেরার বুম স্যারের সামনে তাক করা। কোনোকিছু গ্রাহ্য না করে, স্যারের কাছে গিয়ে, বইটা বাড়িয়ে অটোগ্রাফ নিলাম। আহ! সে কী অনুভূতি! নার্ভাস নাইন্টি নাইনে থাকা একজন ব্যাটসম্যান ১০ বল ডটের পর একটা সিঙ্গেল নিয়ে সেঞ্চুরি করলে, যে অনুভূতি হয়, অনেকটা সেরকম। বুঝিয়ে বলা যাবেনা। যাক গে, অটোগ্রাফ, ফটোগ্রাফ সব তো হলো। এবার ভাংতি গুনতে গিয়ে দেখি, সেলসম্যান আমাকে ১০০ টাকার দুটি নোট ফিরিয়ে দিয়েছে। যদিও বইয়ের গায়ের দামই ২২৫ টাকা,আমার কাছ থেকে রেখেছে ৩০০ টাকা! তবে, তখন এমনই অবস্থা, সবকিছুই ভালো লাগছিলো। ১০০ টাকা বেশিই খরচ হলো, কী আসে যায়! স্যারের একটা অটোগ্রাফ নিতে পেরেছি, তাতেই খুশি ছিলাম। হয়তো সেলসম্যানও ভুলেই আমাকে একটা নোট কম দিয়েছে, তাকেও একপাক্ষিক দোষ দেয়া যায় না। তবে, সেই ১০০ টাকার আক্ষেপ আমাকে আজো পোড়ায়, আমি নিতান্তই গরীব মানুষ :( বইটা নামেই কল্পবিজ্ঞান, আসলে এটাকে শুধু “কিশোর উপন্যাস” বললেও খুব একটা মিথ্যে বলা হতোনা। স্যারের যেসব অসাধারণ অসাধারণ সায়েন্স ফিকশন আছে, সেগুলোর কাছে “সেরিনা” মোটেও পাত্তা পাবেনা। সত্যি কথা বলতে "সেরিনা" পড়ে আমি হতাশই হয়েছি। স্যারের মাস্টারপিস সব বইয়ের তুলনায় এটা নেহায়েতই একটা তুচ্ছ সাই-ফাই। তবে, যারা আমার মত জাফর ইকবাল স্যারের একটা লেখাও মিস করতে চান না, তাদের জন্যে অবশ্যই অবশ্যপাঠ্য “সেরিনা।“
Science-Fiction
4
হিমুকে নিয়ে লেখা হুমায়ুন আহমেদের অন্যতম জনপ্রিয় উপন্যাস ‘আঙুল কাটা জগলু’। মেঘেদের মন মেজাজ আছে। তারা রহস্য করতে পছন্দ করে। অনেক সময় দেখা যায় ঘন কালো মেঘে চারপাশ অন্ধকার হয়ে আসচ্ছে যেকোন মুহূর্তে বৃষ্টি নামবে কিন্তু তখন আর বৃষ্টি হয় না। আমার দেখা যায় ঝলমলে রোদে ভোরা আকাশ কিন্তু হুট করে তখন কোথা থেকে মেঘ এসে ঝুপ করে একপশলা বৃষ্টি এসে পরে। আষাঢ়ের শেষ কিংবা শ্রাবণের কোন একদিন, সন্ধ্যা হবে হবে এমন এক সময় হিমু দাঁড়িয়ে আছে ফুলবাড়ি বাস টার্মিনালের নর্দমার ডান পাশে। হিমু সেখানে দাঁড়িয়ে আকাশ দেখছে।আকাশ মেঘে মেঘে অন্ধকার হয়ে গিয়েছে, যে কোন সময় বৃষ্টি নামবে।এমন সময় মতি নামের একজন এসে বলল আঙুল কাটা জগলু ভাই তাকে ডাকছে। আঙুল কাটা জগলু ভাই অতি পরিচিত ব্যক্তি।পত্রিকার ভাষায় শীর্ষ সন্ত্রাসী। বাংলাদেশ সরকার তাকে ধরিয়ে দিতে পারলে পঞ্চাশ হাজার টাকা পুরস্কারের ঘোষণা দিয়েছে।সন্ত্রাসী হলেও উনি শিক্ষিত। ইউনিভার্সিটি থেকে ডিগ্রী পাওয়া মানুষ। তাঁর পড়াশুনা ইংরেজি সাহিত্যে।আঙুল কাটা জগলু নাম হলেও তার সব আঙুল ঠিক আছে।শুধু ঠিক না বেশ ভালো মত ঠিক আছে।লম্বা লম্বা আঙুল। মানুষটার চোখ সুন্দর,চেহারা সুন্দর।মাথা ভর্তি চুল।---হিমু বাংলাদেশী কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদ সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় চরিত্র। হিমু একজন বাউন্ডুলে ধরনের যুবক।বয়স ২৫-৩০ বছরের মধ্যে। তার পোশাক ও গেট-আপ কিছু কিছু মানুষের কাছে বিরক্তিকর । সে খুব একটা সুদর্শন না কিন্তু তার চোখ ও হাসি খুব সুন্দর হিমু চরিত্রের আসল নাম হিমালয়। এ নামটি রেখেছিলেন তার বাবা। যার বিশ্বাস ছিল ডাক্তার, ইঞ্জিনিয়ার যদি প্রশিক্ষণ দিয়ে তৈরি করা যায় তবে একইভাবে মহাপুরুষও তৈরি করা সম্ভব। তার মহাপুরুষ তৈরির বিদ্যালয় ছিল যার একমাত্র ছাত্র ছিল তার সন্তান হিমু। উপন্যাসে প্রায়ই তার মধ্যে আধ্যাত্মিক ক্ষমতার প্রকাশ দেখা যায়। যদিও হিমু নিজে তার কোন আধ্যাত্মিক ক্ষমতার কথা স্বীকার করে না। হিমুর আচার-আচরণ বিভ্রান্তিকর। বিভিন্ন পরিস্থিতিতে তার প্রতিক্রিয়া অন্যদেরকে বিভ্রান্ত করে, এবং এই বিভ্রান্তি সৃষ্টি করা হিমুর অত্যন্ত প্রিয় একটি কাজ।
Fiction
0
" লিটু বৃত্তান্ত - মুহম্মদ জাফর ইকবাল " "লিটু বৃত্তান্ত" গল্পটা লিটু নামের কোন এক কিশোর যুবকের একার গল্প নয়। গল্পটা আমাদের, সকলের। এই গল্প কিশোর বয়সে দুরন্তপনার গল্প, দেশকে ভালোবাসার গল্প, মজার ছলে-গল্পের ঢং এ বিজ্ঞানকে জানার গল্প, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাকে জানার গল্প, সকলকে নিয়ে ইহা একা জমজমাট অ্যাডভেঞ্চার। মুহম্মদ জাফর ইকবাল দেশজ ঢং এ কিশোর উপন্যাসকে অন্য এক মাত্রা দিয়েছেন। সবেমাত্র দুরন্তপনা জেঁকে বসেছে মনে। এমন সব দুরন্তপনা মনকে আরেকটু রং ছিটিয়ে মনের তৃষ্ণা টা যেন বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর সেই সব তৃষ্ণা থেকে বালক বয়সে জানার আগ্রহ, দেশপ্রেম এবং শিক্ষাটাকে আয়ত্ত করার আগ্রহ জন্ম দিতে থাকেন স্যার। এক একেকটা বই যেন জ্ঞানের সমুদ্র, মনের পথ্য। খাবার টেবিলে পারিবারিক সুস্পর্শ দিয়ে গল্পের শুরু করে গল্পের ইতি টানে অদ্ভুত এক বন্ধুত্বের গল্প দিয়ে। যে গল্প শুরু হওয়ার কিন্তু শেষ হবার নয়। লিটু নামের এক কিশোর, শহুরে পরিবেশ ছেড়ে নতুন পরিবেশ হাওড়ে বাস গাড়ার গল্প। বাবার বদলি মানে বন্ধুবান্ধব, নিজস্ব পরিচিত যায়গা, পরিচিত মানুষজন ছেড়ে নতুন এক জগৎে প্রবেশ। কেমন সেই নতুন? কেমন হবে নতুন যায়গা, নতুন মানুষজন, নতুন স্কুল, নতুন বন্ধুবান্ধব। কেমন হল সেই সব নতুন তার গল্পে বর্ণিত উপন্যাস লিটু বৃত্তান্ত। কেমন সেই সব নতুনের গল্প, জানতে হলে বইটি পড়তে হবে। চারপাশে কত মানুষ। সবাইকে মনে থাকে না। তবুও কিছু মানুষ মনে জেঁকে বসে। এই যাদের মনে থাকে তাদের সবার কথা বলেও শেষ করা যায় না। তাদের কথা বলতে থাকলে মনে হয় জীবনে বেঁচে থাকাটা সত্যিই মজার। বই: লিটু বৃত্তান্ত। লেখক: মুহম্মদ জাফর ইকবাল। প্রকাশনী: অনন্যা প্রকাশনী। মূল্য: একশো পঞ্চাশ।
Childrens-Book
2
::: রিভিউ ::: ১৯৪৩-৪৪ সালের গ্রামীণ ভারতবর্ষ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের বারুদের গন্ধ এখানে এসে না পৌছালেও আরেক দাবানল ছারখার করে দেয় সমগ্র ভারতের গ্রামীণ সত্ত্বাকে। সেই দাবানলের নাম ক্ষুধা। অখন্ড ভারতবর্ষের মানুষের স্বপ্ন তখন অর্থ, অট্টালিকা আর প্রতিষ্ঠা নয়, শুধু একমুঠো চাল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় সৈনিকদের জন্য খাদ্যের অগ্রীম মজুত বাড়াতে ভারতবর্ষের গ্রামে গ্রামে শেষ খাদ্যদানাটুকুও ব্রিটিশ সরকার কেড়ে নিতে শুরু করে। শুরু হয় দুর্ভিক্ষ। সারা ভারত জুড়ে মৃত্যুবরণ করে ৫০ লক্ষ অসহায় মানুষ। লেখক বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অশনি সংকেত উপন্যাসটিতে সেই দুর্ভিক্ষের দাবানলে এক সহায় সম্বলহীন দরিদ্র ব্রাহ্মণ পরিবারের বেঁচে থাকার লড়াই উপস্থাপনের মাধ্যমে পাঠকদের নিয়ে গেছেন সেই ৭০ বছর পূর্বের গ্রামীণ ভারতবর্ষে। বইয়ের নামঃ অশনি সংকেত ( অসমাপ্ত ) লেখকের নামঃ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় ঘরানাঃ সামাজিক পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৯৬ প্রকাশনীঃ মাটিগন্ধা প্রথম প্রকাশঃ ১৩৬৬ বঙ্গাব্দ নামকরণের স্বার্থকতাঃ স্বাধীনতাপূর্বে ভারতবর্ষের অবিভক্ত বাংলায় ধনী দরিদ্র সব মানুষের মাঝে অদ্ভুত এক অহংকার দানা বেঁধেছিল। সেই অহংকার ছিল প্রাচুর্যের। গোলা ভর্তি ধান। জলাশয়ে অসংখ্যা মাছের বিচরণ। সৃষ্টিকর্তার আদেশে যেন প্রকৃতি সবকিছু দান করেছে বাংলার মানুষকে। মানুষ দুটো ভাতের জন্য অনাহারে প্রাণ দিতে পারে এমন কথা তাদের কল্পনা জগতেও কখনো ঠাই পেত না। কিন্তু ছিয়াত্তরের মন্বত্তরের প্রায় দুইশত বছর পর মানুষ আবার জানলো দু মুঠো আহার হতে পারে কতটা দামী। উপন্যাসে নতুন গাঁয়ে দুর্ভিক্ষের দাবানলে যেদিন মতি নামের মেয়েটির প্রথম চিতা জ্বলে উঠলো সেদিন মানুষ বুঝতে পারলো ধধংসের সংকেত। অনাহারের আগুনে ছাই হয়ে উড়ে যাওয়ার লক্ষ মানুষের জন্য বিনাশের অশনি সংকেত। চারিত্রিক বিশ্লেষণঃ সমগ্র উপন্যাসটিতে দরিদ্র ব্রাক্ষণ গঙ্গাচরণ যেন ছিল মস্তিষ্ক আর তার স্ত্রী অনঙ্গ বৌ ছিল হৃদপিন্ড। একটু ভাল থাকার, দুটা ভাল খাওয়ার আশায় গঙ্গাচরণ পরিবারকে নিয়ে পাড়ি দিয়েছে এক গ্রাম থেকে আরেক গ্রাম। কখনো বাসুদেবপুর, কখনো ভাতছোলা আবার কখনো নতুন গাঁ। গঙ্গাচরণ দরিদ্র হলেও কিছু শিক্ষিত ছিল। নতুন গাঁয়ে এসে টোল খুলে ছাত্র জুটিয়ে শুরুটা বেশ ভাল হয়েছিল গঙ্গাচরণের। চতুর গঙ্গাচরণ গ্রামের মানুষের মিথ্যে চিকিৎসা করেও সুনাম এবং সামগ্রী দুটো উপার্জন করছিলো। কিন্তু হঠাৎ একদিন সেই স্রোত থেমে গেল। শুরু হলো যুদ্ধ। হু হু করে বেড়ে যেতে লাগল চালের দাম। শুণ্য হয়ে গেল গুদাম ভরা পাহাড় সমান চালের সারি সারি বস্তা। যারা একদিন স্বপ্রনোদিত হয়ে মাছ, সবজি এনে ব্রাক্ষণকে সেবা দিত তাঁরাই দু মুঠো চালের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতো লাগল গ্রামের পর গ্রাম। এরই মাঝে একদিন অনঙ্গ বউ এর কোলজুড়ে আসে নবজাতক। যার মুখে আহার দিতে গঙ্গাচরণ আর অনঙ্গ বউ প্রতিদিন মুখোমুখি হয় নতুন যুদ্ধের। এতকিছু পরেও অনঙ্গ বউ যেন দেবী অন্নপূর্ণা। তীব্র দুর্ভিক্ষের সময় যে এসেছে দুটো ভাতের দাবী নিয়ে কাউকে ফেরাতে পারেনি সেই দেবী। এমনি একজন ধূর্ত ব্রাক্ষণ দুর্গা ভটচায গঙ্গাচরণের কাছে নিলজ্জের মত দিনের পর দিন পাত পেরে খেয়ে গেছে। আর সেই দেবী নিজে না খেয়ে বৃদ্ধকে তুলে দিয়েছে সবটুকু। সেখানেই বিবেক বিবর্জিত ব্রাক্ষণ থেমে যায়নি, নিজের সমগ্র পরিবার নিয়ে উঠে এসেছে গঙ্গাচরণের বাড়িতে। তবুও অনঙ্গ বউ অবিচল। ক্ষুধা মানুষকে দিয়ে কি করাতে পারে? কোথায় নামাতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তর পেতে পেটে আহার ভরা কোন দার্শনিককে করে কখনো সত্যিটা জানা যাবে না, দেখা যাবে না। জানতে হলে প্রশ্নটা কতে হবে কোন ক্ষুধার্তকে কিংবা অশনি সংকেত উপন্যাসটি পড়লে আমরা সেই নিষ্ঠুর সত্যটা মানসপটে চাক্ষুস দেখতে পাবো। শুধু দুটো গরম ভাতের জন্য কাপালীদের ছোট বউ যখন নিজের শরীর অন্য পুরুষের কাছে বিলিয়ে আসে তখন জানা যায় ক্ষুধার প্রকৃত সংজ্ঞা। ব্যক্তিগত অভিমতঃ আমি ব্যক্তিগতভাবে মনে করি বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায় দুই বাংলা শ্রেষ্ঠ উপন্যাসিক। যাকে আজ পর্যন্ত কেউ ছাড়িয়ে যেতে পারেননি। কারণ সম্ভবত বিভূতিভূষণ একমাত্র সাহিত্যিক যিনি একই সাথে দুইধারার উপন্যাস লিখেছেন। আরণ্যক, দৃষ্টিপ্রদীপ, অপারিজত লিখে উনি সাহিত্যের সমৃদ্ধির সম্যক রূপ উনি পাঠকদের সামনে দাড় করিয়েছেন আর আদর্শ হিন্দু হোটেল, চাঁদের পাহাড়, অশনি সংকেত রচনা করে উনি বাংলা ভাষায় প্রাঞ্জল সাহিত্যের জন্ম দিয়েছেন। অশনি সংকেত উপন্যাস তিনি শেষ করে যেতে পারেননি। আর সেটা বাংলা সাহিত্যের দুর্ভাগ্য। তবে এই অসম্পূর্ণ উপন্যাসটিতে পাঠক দুর্ভিক্ষের জীবন্ত রূপ দেখতে পাবেন আর দেখতে পাবে মনুষ্যত্বের গভীরতা। সুখী হবার জন্য রোজ আমরা মরীচীকার পিছনে ছুটে চলেছি। কিন্তু বিশ্বাস আর ভালোবাসা থাকলে এক মুঠো ভাত দুজনে ভাগ করে খাওয়ার মাঝেও সুখ আছে, তৃপ্তি আছে। যেখানে মমতা থাকে সেখানে নিজে না খেয়ে অন্যের প্রশান্তি মুখের অন্নের গ্রাস তুলতে দেখে পৃথিবীর সর্বশ্রেষ্ঠ সুখ খুঁজে পাওয়া যায়। কোন অশনি সংকেত, কোন দুর্ভিক্ষ সেই সুখ কেড়ে নিতে পারে না।
Fiction
0
গল্পটি একজন মানুষের স্বপ্নের গল্প, উত্থান এর গল্প। একজন চালচুলোহীন লোকের শত বাধাবিপত্তি মোকাবেলা করে একমাত্র নিজের গুনে বড় হওয়ার গল্প। আর এটি যাকে নিয়ে লিখা তার নাম ‘হাজারী চক্রবর্তী’। কাহিনী সংক্ষেপঃ হাজারী ঠাকুর রাণাঘাটে আসে পুরো দরিদ্র অবস্থায় সাথে শুধুমাত্র তার রান্নার গুন। সেই গুনে তার চাকুরী জোটে ‘বেচু চক্কতি’ এর দোকানে। এমন গুনে নামমাত্র মাইনেতে চাকুরী শুরু করে। তার রান্নার গুনে যেখানে খদ্দেররা দূর দুরান্ত থেকে ছুটে আসে বারবার চেখে দেখতে, তবুও তার স্থান ওই সাধারন চাকরের জায়গাতেই। বেচু চক্কতির সাথে আর একজন আছে ‘পদ্দ ঝি’, যে দোকানে নামে ম্যানাজার হলেও কাজে দোকানের যা যা যেভাবে পারে সেভাবে তার বাড়িতে নিয়ে যাওয়া আর তার প্রধান কাজ হচ্ছে হাজারী ঠাকুরকে যেভাবে পারে ঠকানো। মাঝে সে অন্য দোকান থেকে চাকুরীর ডাক পেলেও যায়নি সেখানে, যে সে যদি চাকরীই করে তবে এখানেই করবে। এভাবেই চলতে থাকে হাজারীর জীবন। হাজারীর গ্রামে তার স্ত্রী ও মেয়ে- টোপা থাকে। সে স্বপ্ন দেখে তার তার নিজের একটা হোটেল থাকবে যা দিয়ে সে তার অবস্থা ভাল করবে, তার মেয়েকে ভাল কারও হাতে তুলে দিবে আর হ্যাঁ সে পদ্দঝি এর মত দোকেনে কোন খদ্দরকে ঠকাবে না, হবে একটি ‘আদর্শ হিন্দু হোটেল’। অন্য চরিত্র এর মধ্যে আছে ‘কুসুম’ যাকে সে নিজের মেয়ের মত ভাবে, আছে ‘অতসী’ সে গ্রামে ধনীর ঘরের মেয়ে হয়েও হাজারী কে নিজের পিতার সম্মান দিয়েছে, আরেক আছে ‘সুহাসিনী’, এদের সকলের মাঝে মিল হল সকলেই হাজারী কে নিজের পিতার মর্যাদা দিয়েছিল ও তার স্বপ্ন পুরনের জন্য নিজেদের যা আর্থিক সম্বল ছিল তাও দিতে প্রস্তুত ছিল। এক সময় পদ্দঝির চক্রান্তে তার চুরির দায়ে হোটেল থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় কিন্তু সে থেমে থাকে না, সে তার পথ খুজে নেয় বারবার তার রান্নার গুনে, এবং শেষে তার স্বপ্ন পুরন হয় সবগুলো। সে একসময় সব পায় কিন্তু তবুও সে বিনয়ী থাকে। কালের বিবর্তনে অন্যের পতন হয়, তার উত্থান হয় তবুও সে অহংকারী হয় না, সাহায্য করে যায় তাদের যারা এক সময় ক্ষতি চেয়েছিল তাদের এবং পরিশেষে সে যা চেয়েছিল তার চেয়ে হাজারগুণ বেশিই পেয়েছিল। প্রতিক্রিয়াঃ বইটি থেকে একটা জিনিস স্পষ্ট শিখতে পাই তা হল নিজে বিশুদ্ধ থেকে ও নিজের উপর বিশ্বাস রেখে কাজ করলে উত্থান হবেই তার জন্য অন্যকে ঠকাতে হবে না। এ এক অসাধারণ গল্প, না পড়লে জীবন বৃথা যাবে বলে দিচ্চি বৈকি।
Fiction
0
যে মেয়েটি তাঁর হাতে এক কাপ চা আর একটি শিঙাড়া দিয়ে গেল, তাকে দেখে চমকে উঠেছেন হায়দার। এখন নিজের ঘরের দরজায় গিয়ে হেলান দিয়ে দাঁড়িয়েছে। একটা হাত ওপরে তুলে দরজার চৌকাঠ ধরে দাঁড়ানো। এই ভঙ্গিতে আরও স্পষ্ট হয়ে ওঠে ভারী বুক আর কোমরের বিপজ্জনক বাঁক। কালো মেয়ের এমন চোখকাড়া সৌন্দর্য অনেক দিন দেখা হয়নি। অথচ গভীর কালো চোখে বাড়তি এক পরত কাজল ছাড়া তেমন সাজগোজও নেই। গলা শুকিয়ে যায়। চায়ে চুমুক দেন হায়দার। বিস্বাদ চা। নারীর রূপ আর দেহের সৌন্দর্য দেখতে এখানে আসেননি। কাজ আছে, অনেক কাজ। সে কথা মনে করিয়ে দেওয়ার জন্যই কি তাঁর সামনে এসে দাঁড়াল মমতাজ হোসেন? ‘স্যার...।’ ‘জি, বলেন মমতাজ সাহেব।’ আগের প্রসঙ্গে ফিরে যেতে একটু সময় নিল মমতাজ, তারপর নাটকীয় ভঙ্গিতে শুরু করল, ‘ধরেন তার আত্মীয়-স্বজন বা পাড়া-প্রতিবেশী কেউ তাকে জিজ্ঞেস করল, “অ বাসন্তী, তোর নেইক্যা হডে?” মানে, এই বাসন্তী, তোর স্বামী কোথায়? এর উত্তরে সে কী বলবে, জানেন? বলবে, “অ মা আঁর কি নেইক্যা! ইবা তো মা গঙ্গার নেইক্যা, বাইর দইজ্জাত্তুন ফিরি আইলে তইয়েনা আঁঁর নেইক্যা।” মানে বুঝতে পেরেছেন, স্যার? বাসন্তী বলছে, আরে আমার কি স্বামী? সে তো মা গঙ্গার স্বামী, সমুদ্র থেকে ফিরে এলে তখনই না সে আমার স্বামী...। ব্যাপারটা বুঝেছেন?’ ‘ইন্টারেস্টিং। একটা ভয় থেকে প্রকৃতিকে সন্তুষ্ট রাখার অদ্ভুত চেষ্টা..., নিজের স্বামীকেই সে আর দাবি করছে না স্বামী বলে।’ ‘এর সাথে লোকাচারেরও একটা সম্পর্ক আছে...।’ ‘তা তো আছেই, স্যার। প্রতিবছর একটা মৌসুমে জেলেপাড়ার কিছু পুরুষ দল বেঁধে চলে যায় সমুদ্রে মাছ ধরতে। মহাজন, মাছ ব্যবসায়ীরা অগ্রিম টাকা দিয়ে যায়। তখন হিন্দু জেলেদের ঘরে ঘরে গঙ্গাপূজা, আর মুসলমান জেলেদের জন্য মসজিদে মিলাদ...। ‘মুসলমানদের মধ্যেও জেলে আছে নাকি?’ ‘আছে স্যার। বংশপরম্পরায় জেলে না, পেটের দায়ে এ পেশায় এসেছে। ঠিক জেলে বলে না, তাদেরকে ডাকা হয় নিকারি। মুসলমান হয়েও এ পেশায় আসায় অনেকে ওদের একটু তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে, ঘৃণাও করে। কিন্তু পেটের দায় স্যার...।’ একটা দুর্গন্ধ এসে নাকে লাগছিল, অস্থির করে তুলছিল তাঁকে। কিন্তু নাকে রুমাল চাপা দিতেও একটু সংকোচ হচ্ছে, তাতে না আবার বস্তিজীবনের সঙ্গে তাঁর ব্যবধানেরব্যাপারটা কারও নজরে আসে। কিন্তু সবচেয়ে বড় অসুবিধাটা হচ্ছে, এক কাপ চা আর একটি শিঙাড়া এনে দিয়েছে মেয়েটি; এত দুধ-চিনি গুলে দিয়ে পানীয়টিকে চা বলা হচ্ছে কেন বোঝার উপায় নেই। কী করে যে পুরো কাপ শেষ করা যাবে, প্রতিটা চুমুকে যেখানে সারা শরীর গুলিয়ে উঠছে! জ্ঞানীর সামনে হেমলকও বোধ করি এত ভীতিকর নয়। সব মিলিয়ে পরিবেশটা খুবই অস্বস্তিকর। তবে ওদের জন্য কাজ করতে হলে এটুকু ত্যাগ তো স্বীকার করতেই হয়। তা ছাড়া মেয়েটি যে ঘরের দরজায় দাঁড়িয়ে অর্ধপ্রকাশিত হয়ে আছে, মাঝেমধ্যে ওর দিকে তাকানোর মধ্যে একধরনের সুখ আছে। ... সুত্রঃ ইত্তেফাক
Fiction
0
বইটির প্রচ্ছদের প্রথম কথাটি হল- ‘হুমায়ূন আহমেদের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী!’ এবং বইটির ভুমিকায় লেখকের নিজ ভাষ্য- “ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখার সময় লেখক কে সচেতন ভাবে কল্পনা পরিহার করে যুক্তিতে থাকার চেষ্টা করতে হয়। আমি কখনো তা পারি না। আমি শ্রদ্ধা করি- যুক্তি, কিন্তু ভালবাসি- কল্পনা। আর এটাতো জাগতিক সত্য ভালবাসার এবং শ্রদ্ধার সঙ্গে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে ভালবাসাই জয়ী হয়।“ সে কারণে আমরাও সচেতন ভাবেই ‘সায়েন্স ফিকশান’ হিসেবে অন্তত এই বইটির মূল্যায়ন করবো না! সায়েন্স ফিকশান ও সায়েন্টিফিক ফ্যান্টাসি দুটো আলাদা বিষয়। উদাহরণ স্বরূপ, In A Good Cause ছোট গল্পটি আসিমভের লেখা ‘সায়েন্স ফিকশন’ কিন্তু Time Pussy ছোট গল্পটি তাঁরই লেখা একটি ‘সায়েন্টিফিক ফ্যান্টাসি’। পঞ্চাশঊর্ধ্ব হাইস্কুল গণিত শিক্ষক মনসুর সাহেবের জীবনের শেষ কয়েকটি দিনের ঘটনার বিবরণ নিয়েই বইটি লেখা,অন্যান্য চরিত্র গুলোর মধ্যে অন্যতম হল একজন বিশ-একুশ বছরের যুবক-ফিবোনাক্কি, যে শূন্য মাত্রার জগত(!) থেকে এসেছে মনসুর সাহেব কে একটি গাণিতিক রাশিমালা তৈরিতে সাহায্য করতে। বইটির বর্ণনার একটি বড় অংশ জুড়ে রয়েছে বিশেষ একটি গাণিতিক রাশিমালা- ফিবোনাক্কি ( Fibonacci numbers/ sequence)। ১২০২ খৃস্টাব্দে পিসার গনিতবিদ লিও ফিবোনাক্কি এর প্রথম বর্ণনা দেন। পরবর্তীতে উনিশ শতকের সংখ্যা তত্ত্ববিদ এডওয়ার্ড লুকাস এর বিশদ বৈশিষ্ট্য, ব্যবহারিক প্রয়োগ ও প্রকৃতিতে পাওয়া যায় এমন উদাহরণ গুলো তুলে ধরেন। সাধারণ পাঠক হিসেবে গণিতের আকর্ষণীয় এই রাশিমালা সম্বন্ধে জানতে পারাটাই বইটির একমাত্র পাওয়া বলে মনে করছি। মজার বিষয় হলো লেখক বইটিতে অনেকগুলো বিষয় ও উদাহরন দিলেও যে ‘বিখ্যাত’ খরগোশের প্রজনন কাহিনীর বর্ণনা দিয়ে ফিবোনাক্কি এই রাশিমালার সূচনা করলেন তারই উল্লেখ নেই। কারণ, লেখক যুক্তিতে থাকতে পছন্দ করেন না! কাহিনীর সূচনায় দেখা যায়, তিন পুরুষ ধরে গণিত চর্চাকারী শিক্ষক মনসুর সাহেব তার নিয়মিত ক্লাসে শারীরিক ভাবে অসুস্থ বোধ করছেন, তিনি বিচলিত তার নিজ চিন্তার ভুবন নিয়ে, নিয়মতান্ত্রিক মানুষ হিসেবে তিনি তার এলাকায় শ্রদ্ধাশীল, নিজ জীবনে নিয়মের ব্যাতিক্রম তাকে অস্থির করে তোলে। পরবর্তীতে দেখা যায় এক বিশেষ রাশিমালা প্রবর্তনের অদম্য সাধনাই তার চিন্তার জগত ও পারিপার্শ্বিক কে আরও অস্থির করে তুলছে, তার পূর্বপুরুষদের কাছ থেকেই তিনি এই বিশেষ রাশিমালার ধারণা পেয়েছিলেন, তার পিতা ও পিতামহ এর সমাধান শেষ করতে পারেন নি, নিঃসন্তান ও বিপত্নীক মনসুর সাহেব তাই আপ্রাণ চেষ্টারত। হঠাৎ করেই বজ্রাহত হন মনসুর সাহেব, ঠিক তার পর মুহূর্তেই তার সাথে পরিচয় ঘটে এক যুবকের, যে তাকে জানায়- তার বিশেষ রাশিমালার সমাধানে সে সাহায্য করতে চায়। মনসুর সাহেবের এই বিশেষ রাশিমালার প্রথম সংখ্যাটি শূন্য, দ্বিতীয়টি শূন্য / শূন্য _ _ _ _ _ এভাবেই এগিয়ে চলে কাহিনী। মনসুর সাহেবের মৃত্যু দিয়ে শেষ হওয়া এই কাহিনীর মূল চিত্তাকর্ষক বিষয় যুবক ফিবোনাক্কির ভূমিকা।যথারীতি পর্যাপ্ত হুমায়ূন দর্শনবাক্যে বইটি ভরপুর! যেমন, ‘বৈষয়িক মানুষ বিষয় ছাড়া অন্য কিছু ভালবাসতে পারে না। তাদের সেই ক্ষমতা থাকে না। কিন্তু আযিয খাঁ সত্যিকার অর্থেই মনসুর সাহেবকে ভালবাসেন।‘ কিংবা, ‘সত্য যেমন আল্লাহপাকের সৃষ্টি মিথ্যাও তেমন তাঁরই সৃষ্টি।‘ সম্পূর্ণ লেখায় খুব সম্ভবত একটি মাত্র বাক্যই লেখক যুক্তির প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে লিখেছেন, সেটি হলো- ‘√-১ কে নিয়ে আপনারা মাথা ঘামাচ্ছেন। এর আলাদা নাম দিয়েছেন, কাল্পনিক সংখ্যা/ ইমাজিনারি নাম্বার। কিন্তু √-০নিয়ে আপনাদের মাথাব্যাথা নেই।‘ প্রিয় পাঠক বইটি পড়ে ফেলুন এবং নিজেই সিদ্ধান্ত নিন ভবিষ্যতে কোনটা পছন্দ করবেন যুক্তি সঙ্গত ‘সায়েন্স ফিকশন’ নাকি ‘ভালবাসাময় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী’।(ঘুণপোকা ব্লগ হতে সংগৃহীত)
Science-Fiction
4
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা || রিভিউ || বই : দিন শেষে এবং কেটজালকোয়াটল ও সৃষ্টিবিনাশ রহস্য (এক মলাটে দুটো নভেলা) লেখক : রবিন জামান খান ও তানজীম রহমান প্রকাশক : বাতিঘর প্রকাশনী প্রকাশকাল : জুন, ২০১৬ পৃষ্ঠা : যথাক্রমে ৯৪ ও ৭৯ প্রচ্ছদ : ডিলান মুদ্রিত মূল্য : ১৭০ টাকা নভেলা বলতে বোঝায় উপন্যাসিকা। অর্থাৎ, ৭০-১২০ পৃষ্ঠা'র মধ্যে যে কাহিনি রচিত হয়, তা-ই নভেলা। আরেকটু বিস্তৃত অর্থে যদি বলি, তাহলে নভেলা জিনিসটা উপন্যাসের চেয়ে ছোট ও বড় গল্পের চেয়ে বর্ধিত। নভেলা প্রকাশের ক্ষেত্রে এর আগেও দারুন ভূমিকা রেখেছে বাতিঘর প্রকাশনী। এর আগে স্টিফেন কিংয়ের বিখ্যাত দুটো নভেলা রিটা হেওয়ার্থ ও শশাঙ্ক রিডেম্পশন এবং ডোলান্স ক্যাডিলাক এক মলাটে প্রকাশিত হয়েছে এই প্রকাশনী থেকে। আর এবার রবিন জামান খানের দিন শেষে ও তানজীম রহমানের কেটজালকোয়াটল ও সৃষ্টিবিনাশ রহস্যকে এক মলাটে প্রকাশ করা হয়েছে। দুটো নভেলাই পুরোপুরিভাবে মৌলিক থিম নিয়ে লেখা। দিন শেষে : রবিন জামান খানের এই নভেলাটা আবর্তিত হয়েছে তুলি নামের এক তরুণী ডাক্তারকে কেন্দ্র করে। হাসপাতালে ডিউটিরত অবস্থায় সে একজন মারাত্মক আহত রোগীকে পায়, যে মারা যায় কিছুক্ষণ পরেই। কিন্তু রোগীটার মৃত্যুর পর থেকেই শুরু হয় মূল ঘটনা। একদল মানুষ তাড়া করে ফিরতে থাকে ডাক্তার তুলিকে। নিরীহ এই তরুণী ডাক্তার বেশ কিছু ভয়ঙ্কর মানুষের মূল টার্গেটে পরিণত হয়। এমতাবস্থায় তার দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় রহস্যময় একজন মানুষ। কি স্বার্থ তার? জানেনা তুলি। বিশ্বাস আর অবিশ্বাসের দোলাচলে দুলতে থাকা মেয়েটা কাকে বিশ্বাস করবে, বুঝে উঠতে পারেনা। এভাবেই টান টান উত্তেজনার মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে দিন শেষে'র কাহিনি। সবশেষে সবকিছু যেন মিলে যায় এক বিন্দুতে, যে বিন্দুতে একীভূত হয়েছে প্রিয়জন হারানোর কষ্ট, বিশ্বাসঘাতকতা, লোভ আর ক্ষমতার দ্বন্দ্ব। এই নভেলা'র শেষের ট্যুইস্টটা হজম করার জন্য বেশ মানসিক শক্তির প্রয়োজন হবে পাঠকের, এটা বলাই যায়। রবিন জামান খানের এই ক্রাইম থ্রিলার ঘরানা'র নভেলাটা পড়ার সময় সামান্য একঘেয়েমিতে আক্রান্ত হয়েছিলাম। কারণ, একই ঘটনা ভিন্ন ভিন্ন কয়েকটা চরিত্রের অংশগ্রহণে তাদের নিজস্ব দৃষ্টিকোণ থেকে বর্ণনা করা হয়েছে। এই সামান্য একঘেয়েমি'র ব্যাপারটা বাদ রাখলে মোটামুটি ভালোই ছিলো নভেলাটা। আমার রেটিং : ৩.৫/৫ কেটজালকোয়াটল ও সৃষ্টিবিনাশ রহস্য : অ্যাজটেক দেবালয়ের যুবরাজ কেটজালকোয়াটলকে নিয়ে রচিত এই উপাখ্যানকে থ্রিলার ঘরানায় ফেলা না গেলেও এটাকে মিথোলজি'র আস্তরে মোড়ানো ফ্যান্টাসি নভেলা বলা যায়। দিশেহারা হয়ে পড়েছেন দেবতা কেটজালকোয়াটল। কে বা কারা তাঁর সৃষ্ট পৃথিবী পুরোপুরিভাবে ধ্বংস করে ফেলেছে। মারা পড়েছে অসংখ্য মানুষ। রাগে ফুঁসছেন তিনি। ঘটনার তদন্তে নিজেই এগিয়ে এলেন এই দেবতা। আর তদন্ত শুরু করতেই নিজের সহোদর ছোট ভাই টেজকাটলিপোকা'র রহস্যময় অন্তর্ধান তাঁকে আরো চিন্তিত করে তুললো। ঘৃণ্য এই ঘটনার শেকড় অনুসন্ধানে কেটজালকোয়াটল ঘুরতে লাগলেন দেবলোক থেকে দেবলোকে। অলিম্পিয়ান, কামি আর অ্যাসগার্ডের দেবলোক সহ নানা সম্ভব অসম্ভব জায়গায় ছুটে বেড়াতে লাগলেন তিনি। জড়িয়ে গেলেন বেশ কিছু অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনার সঙ্গে। আর এভাবেই শেষমেশ মুখোমুখি হলেন চরম সত্যের সাথে, যা হওয়ারই ছিলো একটা সময়। সুলেখক তানজীম রহমান এরই মধ্যে আর্কন আর অক্টারিনের মতো সুখপাঠ্য ও উপভোগ্য হরর থ্রিলার রচনা করে বাংলা মৌলিক থ্রিলার জগতে স্থাপন করেন দারুন মাইলফলক। কেটজালকোয়াটল ও সৃষ্টিবিনাশ রহস্যের মতো ফ্যান্টাসি নভেলা প্রমাণ করেছে এই ঘরানাতেও তাঁর অসাধারণ দখলের কথা। গল্প বলার মুনশিয়ানা আর উত্তেজনাকর ক্লাইম্যাক্স দিয়ে নিজের জায়গা বরাবরের মতোই সমুন্নত রেখেছেন তিনি। বিশেষ করে কেটজালকোয়াটলের নানান দেবলোকে রোমাঞ্চকর ভ্রমণ এই নভেলা উপভোগে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে বলেই আমার মনে হয়। ভবিষ্যতে তাঁর কাছ থেকে এমন ভিন্ন স্বাদের লেখা আরো আশা করি। আমার রেটিং : ৪/৫ ঢাউস সাইজের উপন্যাসের এই যুগে নভেলা প্রকাশের দিকে বাতিঘর প্রকাশনী'র এমন উদ্যোগ নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিদার। বাঙ্গালী পাঠক সমাজে নভেলা'র কদর আরো বাড়ুক। অব্যাহত থাকুক প্রকাশনা। ডিলান সাহেবের দুটো প্রচ্ছদই ভালো লেগেছে। যারা এখনো বইটা পড়েননি, পড়ে ফেলতে পারেন। ভিন্ন ভিন্ন স্বাদের দুটো নভেলা অপেক্ষা করছে আপনার পাঠক মনের খোরাক মেটানোর জন্য। © শুভাগত দীপ
Thriller
1
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ রিভিউ নংঃ২৮ উপন্যাস: শুভ্র গেছে বনে লেখক:হুমায়ুন আহমেদ প্রকাশনঃঅন্যপ্রকাশ ধরনঃসমকালীন মুল্যঃ২৭০ টাকা বই আলোচনাঃ আজহার অফিসে যান নি। গতকাল রাতে দুবার খাওয়ায় শরীর বিগড়ে গেছে। ঘনঘন বাথরুমে যেতে হচ্ছে। অ্যাসিডিটিতে বুক জ্বলে যাচ্ছে। দুধ খেলে অ্যাসিডিটির আরাম হয়। যুথী মোড়ের দোকান থেকে এক প্যাকেট মিল্কভিটা নিয়ে এসেছে। তিনি পুরোটা খেয়ে কিছুক্ষণ আগে বমি করেছেন। বমির পর মাথা ঘুরছে। এই উপসৰ্গ দুধ খাওয়ার আগে ছিল না। আজহার যুথীকে বললেন, আমি তো মনে হয় মারা যাচ্ছিরে মা। যুথী বাইরে যাবে। শাড়ির কুচি ঠিক করতে করতে নির্বিকার গলায় বলল, এত সহজে কেউ মারা যায় না। বাবা।আজহার বললেন, মানুষ সহজেই মারা যায়। আলেকজান্ডারের মতো মহাবীর ইলিশ মাছ খেয়ে মারা গেছে। কাল রাতে তোর বান্ধবীর বাড়ি থেকে যে খাবার এসেছে, সেখানে ইলিশ মাছের আইটেম ছিল। স্মোকড় হিলসা। আমি ঐ আইটেমটাই বেশি খেয়েছি। মহাবীর আলেকজান্ডারের ইলিশ মাছ খেয়ে মৃত্যুর গল্প আজহার তাঁর বস ইমতিয়োজ সাহেবের কাছে শুনেছেন। ইমতিয়োজ সাহেব সুন্দর সুন্দর গল্প করেন। তাঁর সব গল্পই আজহার সুযোগমতো ব্যবহার করেন। যুথী বলল, বেশি খেলেও তুমি মরবে না। বাবা। কারণ তুমি মহাবীর আলেকজান্ডার না। তুমি কাপুরুষদের একজন। সালমা মাছ কুটছিলেন। মাছ ফেলে উঠে এসে বললেন, এইসব কী ধরনের কথা? বাজারের নটিরাও তো বাপের সঙ্গে এইভাবে কথা বলে না। যুথী বলল, বাজারের নটিদের বাবারা নটিদের সঙ্গে বাস করে না। কাজেই নটিরা এ ধরনের কথা বলে না। আজহার বললেন, বাদ দাও। কথা চালাচালি বন্ধ। তুই যাচ্ছিস কোথায়? চাকরির ইন্টারভিউ দিতে যাচ্ছি। তাঁর কোনো বড় সমস্যা যাচ্ছে। সমস্যার প্রধান লক্ষণ, তিনি খবরের কাগজ পড়ছেন না। কাগজ পড়া তার নেশার মতো। প্রথম একবার চা খেতে খেতে কাগজ শেষ করবেন। তারপর কাগজ নিয়ে বাথরুমে ঢুকে যাবেন। দ্বিতীয় দফায় বাথরুমে কাগজ পাঠ হবে। সেই কাগজ অতি যত্নে ভঁাজ করে তুলে রাখা হবে। অফিস থেকে ফেরার পর কাগজ আবার পাঠ করা হবে। এমন যার নেশা তিনি কাগজ পড়ছেন না। ঘরে বাজার নেই। তিনি বাজারে যাচ্ছেন না। গত দুদিন ডাল, ভাত আর ডিমের তরকারি দিয়ে খাবার তৈরি হচ্ছে। এই বিষয়েও তার কোনো বিকার দেখা যাচ্ছে না। খেতে ডাকলে যাচ্ছেন। সামান্য কিছু মুখে দিয়ে উঠে যাচ্ছেন। ভালো-মন্দ কিছু বলছেন না। খাবার টেবিলে বসে লবণ বেশি হয়েছে বা কম হয়েছে এই বিষয়ে তিনি কিছু বলবেন না তা হয় না। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ শুভ্র চরিত্রটিকে লেখক এই প্রথম তার খোলস থেকে বের করে এনেছেন, সেটাই এই উপন্যাসের সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট এবং সেই কারণেই শুভ্র সিরিজের সাথে পূর্ব পরিচয় ছিল এমন পাঠকদের কাছে কিছু কিছু ক্ষেত্রে উপন্যাসটি আনপ্রেডিক্টেবল হয়ে উঠবে।
Fiction
0
রিভিউঃ খেলা রাম খেলে যা। লেখকঃ সৈয়দ শামসুল হক। পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ২১১ প্রকাশ কালঃ১৯৭৩ ব্যাক্তিগত রেটিং: ৩/৫ "খেলারাম খেলে যা" বইটা সৈয়দ শামসুল হকের অনেক আলোচিত সমালোচিত একটি বই। এই বইটার সমালোচিত হওয়ার প্রধান কারন এই বইয়ের অশ্লীলতা। তবে সৈয়দ শামসুল হক তাঁর ‘শ্রেষ্ঠ উপন্যাস’ গ্রন্থের ভূমিকায় ‘খেলারাম খেলে যা’-কে ‘এদেশের সবচেয়ে ভুল বোঝা উপন্যাস’ হিসেবে অভিহিত করেছিলেন। এবং লিখেছিলেন – ‘রচনার প্রায় কুড়ি বছর পরও এর জন্যে আমাকে আমার অন্যান্য রচনার চেয়ে অনেক বেশি জবাবদিহি করতে হয়।… আমি খুব কম পাঠককে জানি, যিনি উপন্যাসের একেবারে শেষ বাক্যটি লক্ষ্য করেছেন। আমার বিশ্বাস, এই শেষ বাক্যটিতে দাঁড়িয়ে কেউ এ উপন্যাসের জন্যে আমাকে তিরস্কার করতে পারবেন না।’ এই উপন্যাসের মুল চরিত্র বাবর আলী। বাবর আলী টিভিতে ধাঁধা নিয়ে একটা অনুষ্ঠান করেন।তাছাড়া উনার আলাদা একটা ব্যাবসা আছে। সুন্দর এই পরিপাটি মানুষটি অবিবাহিত। কিন্তু চির কুমার নয়! বাবর আলীর ভালোবাসে অবাধ যৌনতা। সে ভালোবাসে নতুন নতুন কিশোরী মেয়েদের শরীর। কিশোরী মেয়ে ছাড়া অন্য কোনো নারীর প্রতি তার তেমন কোনো আকর্ষণ নেই। শিক্ষিত এই মাঝবয়সী লোকটি সুকথকও। নতুন নতুন মেয়েদের নিয়ে বিছানায় যাবার জন্য সে সবসময়ই উদভ্রান্ত। কিন্তু সে কোনো মেয়েকে ধর্ষণ করেন না। সে যেই মেয়েকে টার্গেট করে তার পিছনে টাকা খরচ করে, সময় খরচ করে।অনেক বুদ্ধি খাটিয়ে তাকে বিছানায় নিয়ে আসে।সে জানে কিভাবে মেয়েদের মন জয় করতে হয়। আর সে এটাও জানে মেয়েদের মন জয় করতে পারলে শরীর জয় করা কঠিন কাজ হয় না। সে মেয়েদের সাথে মিলিত হয় কিন্তু সে চায় না মেয়েটা তাকে ভালোবেসে ফেলুক। সেও কোনো বন্ধনে আবদ্ধ হতে চায় না। তার চিন্তা ভাবনা জুড়ে শুধুই যৌনতা। নতুন নতুন কিশোরীর সাথে মিলিত হওয়া। তবে সর্বদা অস্থিরতাই ভোগা একটা মানুষও বাবর। যে মাঝেমাঝেই আক্রান্ত হয়ে যায় একাকিত্বে। যার মাঝে মধ্যেই মনে হয় কেউ তাকে খুঁজছে। বাসা থেকে বের হলেই তার মনে হয় কেউ তাকে খুঁজে পাচ্ছে না আবার বাসায় ফিরলে মনে হয় কেউ তাকে পুরো শহর খুঁজে বেড়াচ্ছে। মাঝে মাঝেই তার খুব কান্না পায়। অতীত তাকে যন্ত্রণা দেয় বারবার।তার মনের মধ্যে চেপে বসে এক অদ্ভুত হাহাকার। সত্যি বলতে খেলারাম খেলে যা আসলে এক বাবরের আড়ালে দুই বাবরের গল্প। এক বাবর নরম মনের।যে অতীত কে মনে করে কষ্ট পায়। একাকীত্ব যাকে তেড়ে বেড়ায়। তখন সে এমন কাউকে খুঁজে বেড়ায় যার কথা শুনলে সে বিরক্ত হয়। আর অন্য বাবর কামকাতর। নারী তার কাছে প্রেমাষ্পদা নয়, সেক্সের আনন্দের উৎসমাত্র।  এই উপন্যাস মাঝে মাঝেই আপনাকে কনফিউজ করে দিবে। এই সব কিছু নিয়েই বাবর হয়ে গেছে বাংলা সাহিত্যের এক অন্যরকম আশ্চর্য জীবন্ত চরিত্র।যে কিনা বর্ধমানের সেই লেবু গাছটার কথা মনে করে বিষন্ন হয়। হারানোর বেদনা যাকে তেড়ে বেড়ায় আবার সেই বাবরেই নতুন নতুন কিশোরীকে কিভাবে বিছানায় আনা যায়। কিভাবে তাদের উপভোগ করা যায় সেটা নিয়ে সে বুদ্ধি বের করে বেড়ায়! পাঠ পতিক্রিয়াঃ বইটা শুরু করার পর আমার প্রথম মনে হয়েছিল এটা নিছক একটা বাংলা চটি বই। যেখানে কামকাতর,লম্পট বাবর একেরপর এক কিশোরীকে কিভাবে বিছানায় নিয়ে আসে সেটা নিয়েই গল্পটা। কিন্তু গল্পটা পড়ে আমি যতোটা এগিয়েছি ততোটাই আমার ভুল ভেঙেছে। বুঝেছি এটা কোনো সাধারন গল্প নয়। এটা শুধু লম্পট বাবরের কাহিনীই নয়। এখানে আরেক বাবরের সাথেও আমার পরিচয় হয়েছে। যেই বাবর মসৃন হৃদয়ের মানুষ। যে তার অতীতের কথা ভেবে চোখের জল ফেলে,যেই বাবরের মন সেই কানা ফকিরটার কথা ভাবে। যে তার ছোটো বোন হাসনুর কথা ভেবে ভেবে দুঃখ পায়। সবশেষে বলবো অসাধারন একটা বই! যারা এখনো পড়েননি তারা পড়ে ফেলতে পারেন! ভালো লাগবে আশাকরি।
Fiction
0
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধের বিজয়ের ইতিহাস সম্বলিত বই “এগারটি সেক্টরের বিজয় কাহিনী”।বইটির লেখক মেজর রফিকুল ইসলাম পিএসসি ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি ও বিজয়ের কথামালা গুলো বেশ সুন্দর ভাবে তুলে ধরেছেন বইটিতে।১৯৭১ সালে পাকিস্তানিদের অন্যায় অত্যাচার থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য এদেশের অসংখ্য মানুষ যুদ্ধে অংশ নেয়।২৫শে মার্চ ভয়ানক কালরাতের পর যখন ২৬শে মার্চ যুদ্ধ ঘোষনা করা হয় তখন যুদ্ধ পরিচালনার জন্য সারা দেশটিকে ১১টি সেক্টরে ভাগ করা হয়।এই বইটিতে লেখক সেই ১১টি সেক্টরের বিজয়গাঁথা তুলে ধরেছে।তুলে ধরেছেন ১১টি সেক্টরের যুদ্ধ পরিচালার কৌশলসমুহ, তুলে ধরেছেন সেক্টর কমান্ডারদের নাম তাদের বিভিন্ন কথা।এই বইটিতে মুক্তিযুদ্ধের সময় ১১টি সেক্টরে ঘটে যাওয়া অনেক ঘটনায় তুলে ধরেন।বর্ণনা করেছেন মুক্তিযুদ্ধের সেই দুঃসময় এবং লোমহর্ষক অসংখ্য কাহিনী।তুলে ধরা হয়েছে পাকিস্তানিদের বিভিন্ন অত্যাচারের কথা।বইটিতে ১১টি সেক্ত্রের বিভিন্ন সংঘটিত যুদ্ধের কথাও বাশ ভাল করে তুলে ধরেছেন।কি করে আস্তে আস্তে বীরমুক্তিযুদ্ধারা বিজয় এর পথে এগিয়ে চলে এবং অবশেষে কিভাবে তারা পাকিস্তানিদের পরাজিত করে আত্মসমর্পণে বাধ্য করেন তা লেখক গুছিয়ে লেখেছেন।বইটি পড়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও তখনকার অনেক ঘটনা আমার কাছে ভাল লেগেছে। মুক্তিযুদ্ধারা তখনকার পরিস্থিতিতে কেমন করে যুদ্ধ করেছে ভাবতেই শরীরে কাঁটা দিয়ে উঠে।বইটি অনেক জ্ঞানমুলক এই বই পড়ে অনেক কিছুই জানতে পারা যাবে।যারা এই বইটি পড়বেন তাদের অবশ্যই অনেক ভাল লাগবে।আমাদের সেই বিজয়ের ইতিহাস পড়তে মিস করবেন না।
War
5
তিনজন এডভেঞ্চার প্রেমীর একটি দলের গুপ্তধন খুঁজার কাহিনী। গ্রুপের প্রধান এলেন কোয়াটামেইন, হাতি শিকার করে দাঁত বিক্রি করা হচ্ছে তার পেশা। এ কাজ করে তার দিনকাল ভালই চলছিলো। কিন্তু কারও জীবন একভাবেই চলতে থাকলে তো আর তাকে নিয়ে গল্প হবে না, তাই একদিন কোয়াটামেইনের সঙ্গে দেখা হয় স্যার হেনরি কার্টিস এবং ক্যাপ্টেন গুড নামে দুজন লোকের। স্যার কার্টিসের এক ভাই এই কিং সলেমনের গুপ্তধন খুঁজতে গিয়ে হারিয়ে গিয়েছেন। এই অজানা মহাদেশে হারিয়ে যাওয়া ভাইকে খুঁজতে তারা এসেছে। যেহেতু কোয়াটামেইন এই বন জঙ্গল মোটামুটি ভালো চিনে তাই তারা কোয়াটামেইনের সাহায্য চান। কিং সলেমোনের গুপ্তধন সে এলাকার একটা জনপ্রিয় মিথ। এর কথা কোয়াটারমেইন আগেই জানতো। মজার কথা হচ্ছে, তার কাছে এই গুপ্তধনের কাছে পৌঁছানো জন্য একটি অদ্ভুত মানচিত্রও ছিল। তিনি কখনও সেই মানচিত্রটিকে তেমন গুরুত্বের সঙ্গে দেখেনি। যাই হোক। প্রথমে গাঁইগুঁই করলেও, কিছু শর্তে একসময় এই গুপ্তধন খুঁজতে জেতে রাজি হয়ে যান। কিছু দাস নিয়ে কয়েকদিন পরেই তিনজন রওনা হয় অভিযানে। এই দাসদের একজন হলেন আমবোপা যিনি বইয়ের খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি চরিত্র। প্রচুর বাধা বিপত্তি পেরিয়ে মৃত্যুকে পেছনে ফেলে দলটি এগিয়ে চলে রাজা সলোমনের গুপ্তধনের উদ্দেশ্যে। যাত্রার পদে পদে রয়েছে যুদ্ধ-বিগ্রহ। আরও রয়েছে টানটান উত্তেজনা। সাহিত্যে ‘লস্ট ওয়ার্ল্ড’ ধারাকে সমৃদ্ধ করা ব্রিটিশ সাহিত্যিকদের মধ্যে স্যার হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড অন্যতম পথিকৃৎ। অদ্ভুত সব স্থানে বিচিত্র চরিত্রের সমারোহে রোমাঞ্চকর উপন্যাস রচনায় পাঠককে মুগ্ধ করার পাশাপাশি ব্রিটিশ রাজত্ব জুড়ে কৃষিকাজে সংস্কারমূলক অবদান রাখেন তিনি। ভিক্টোরিয়ান সাহিত্যযুগের শেষাংশে তার রচিত গল্প ও উপন্যাস আকাশচুম্বী খ্যাতি লাভ করে, অনুপ্রেরণা যোগায় বহু পাঠক ও সাহিত্যিককে। তিনি ইতিহাস আশ্রিত দুঃসাহসিক কাহিনী নিয়ে উপন্যাস রচনায় ছিলেন সিদ্ধহস্ত। নিজের ভ্রমণ অভিজ্ঞতা থেকে তিনি এমনসব অঞ্চলের কাহিনী লিখেছেন যেগুলো ইংরেজদের কাছে ছিল অনেকটাই অপরিচিত এবং অদ্ভুত।
Thriller
1
বুক রিভিউঃ 'রিচার্জ your ডাউন ব্যাটারি' লেখকের সাথে পরিচয় ফেসবুকে। তাঁর জীবনঘনিষ্ঠ বাস্তবধর্মী প্রত্যেকটি লিখা চুম্বকের মতো আকর্ষণ করে। খুব সহজ-সরল সাবলিল ভাষায় লিখেন তিনি, কেতাবি ভাষা নয় যে ভাষা আমরা দৈনন্দিন জীবনে ব্যাবহার করি! অপেক্ষায় থাকি কখন তিনি ফেসবুক লাইভে আসবেন। অনন্য বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন এই মানুষটির ফেসবুক ফলোয়ার প্রায় ৪২ হাজার, আমি তাদের মধ্যে একজন। তাঁর কোনো লিখা যাতে মিস না হয় সেজন্য ফলোয়িং অপশনে 'see first' দিয়ে রেখেছে এই হাবলু! গতবছর একজন বন্ধু প্রোগ্রামিং সম্পর্কিত বইয়ের ব্যাপারে জানতে চাইলে আমি 'হাবলুদের জন্য প্রোগ্রামিং' বইটা সাজেস্ট করেছিলাম। আমি নিজে প্রোগ্রামিং সম্পর্কে অতটা আগ্রহী না হলেও বইটি নিয়ে আমার শতভাগ আস্থা ছিলো। কারণ বইটির লেখক হাবলু দ্য গ্রেট ঝংকার মাহবুব ভাই! রকমারি.কমের মাধ্যমে লেখকের এবছর প্রকাশিত বহুল আকাঙ্ক্ষিত 'রিচার্জ your ডাউন ব্যাটারি' আজ হাতে পেলাম। যদিও দুইটা অর্ডার করে পেয়েছি একটি। সে যাই হোক সাগ্রহে একটানা পড়ে ফেলেছি। লেখক পরিচিতিটা বেশ উপভোগ্য ছিলো, ব্যতিক্রমী তো বটেই। 'উৎসর্গ' অংশটিও অসাধারণ। অধ্যায় শেষে বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গের বিভিন্ন উক্তি জুড়ে দেয়া হয়েছে ইংরেজিতে। আপনি যদি একবার মনোযোগ দিয়ে পড়া শুরু করেন, শেষ না করে উঠতে পারবেন না নিশ্চিত। বইটিকে আমি ১০ এর ভেতরে ৮ দেবো। প্রতিদিনই অসংখ্য পজিটিভ উক্তি, উপদেশ,অণুপ্রেরণামূলক গল্প, জিরো থেকে হিরো হবার কাহিনী, সুখি হবার নানা উপায় চোখে পড়ে আমাদের। এগুলো দেখে একটা মুহূর্তে হুট করেই মোটিভেশন জেগে ওঠে কিন্তু পরেক্ষণেই দপ করে নিভে যায়। আবারও হতাশ লাগে, সবকিছু ভেঙে চুরমার করতে ইচ্ছে জাগে, নিজেকে একা মনে হয়, কিচ্ছু ভালো লাগে না, অতীতের ভালো সময়গুলো কিংবা অর্জন কিছুই মনে আসে না তখন। এমনকি মৃত্যুচিন্তা তাড়া করে বেড়ায় কখোনো। তাহলে বইটিতে কী এমন আছে যা অন্যসব থেকে আলাদা? সেজন্য পুরো বইটা পড়তে হবে। বইয়ের কেন্দ্রীয় চরিত্র মাসুম ভাই এবং আবিরের কথোপকথন দিয়ে শুরু। এগিয়েছে বিভিন্ন সিচুয়েশনে নিজেদেরকে গুঁটিয়ে না রেখে, হাল না ছেড়ে সামনে অগ্রসর হবার আলোচনা দিয়ে। রিস্ক নেয়া, লেগে থাকা, চাকরির পাশাপাশি ব্যাবসার গুরুত্ব এরকম বিভিন্ন বিষয় লেখক নিপুণ দক্ষতায় তুলে ধরেছেন নতুন নতুন চরিত্রের মাধ্যমে। বইয়ের শেষের দিকে আছে লাইফের যে ব্যাটারি, সে ব্যাটারির চার্জ পরিমাপের ১০ টি নির্দেশক। যার মাধ্যমে ব্যাটারির মালিক তার চার্জের লেভেলটা বুঝে করণীয় সম্পর্কে সচেষ্ট হবেন। আরও আছে জীবন লাইনে আনার কায়দাকানুন এবং লেখকের পক্ষ থেকে স্পেশাল পুরস্কার! সত্যি বলতে কী দিনকে দিন আমাদের জীবন যান্ত্রিক হয়ে উঠছে, প্রতিযোগিতার ভীড়ে জীবনকে উপভোগ করার মতো সময় আমরা বের করতে পারছি না। কারও জীবন খুঁড়িয়ে চলছে কেউবা আবার হতাশ হয়ে জীবন থেকে পালানোর পথ খুঁজছে। ব্যাটারিতে চার্জ শেষ হয়ে গেলে যেমন পুনরায় চার্জ দিতে হয়, ঠিক তেমনি জীবনকেও চার্জ দিতে হয়- ধাক্কা দিতে হয়। একেকজনের চার্জার একেকরকম হতেই পারে, তবে অবশ্যই চার্জার সঙ্গে রাখতে হবে। আমি মনে করি,'রিচার্জ your ডাউন ব্যাটারি' বইটির মূলভাবও হতে পারে লাইফ চার্জের অন্যতম অনুষঙ্গ। নিজের ভেতর পরিবর্তন অনুভবের জন্যে বইটি পড়ুন। দেশের লাখ লাখ হতাশাগ্রস্থ তরুণ ঘুরে দাঁড়াক, তাদের জীবনের ব্যাটারি ডাউন হলেই যেন রিচার্জ করার সুযোগ পায় সেই প্রত্যাশা থাকবে। তারুণ্যের জয় অনিবার্য!
Motivational
6
আমার বন্ধু রাশেদ মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের লেখা ছোটদের গল্পের মধ্যে অন্যতম । মূলত ছোটদের জন্য লেখা হলেও গল্পটি বড়দেরও মন ছুয়ে গেছে । গল্পটি মমুক্তিযুদ্ধভিত্তিক । ১৯৭১ সালে আমাদের দেশের কিশোররা মুক্তিযুদ্ধে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে তা এখানে তুলে ধরা হয়েছে । আমি এই গল্পটি যতই পড়ছিলাম ততই এই দেশের জন্য গর্বিত বোধ করছিলাম । গল্পটি পড়তে পড়তে শেষ পর্যায়ে আমি আর নিজেকে আটকে রাখতে পারি নাই। আমারও রাশেদের মতো বুকের ভিতর ফাঁকা ফাঁকা লাগছিল । আশেপাশে সব ঝাপসা হয়ে গিয়েছিল । গল্পটি পড়া শেষে আমি রাশেদের কাছে ক্ষমা চেয়েছিলাম । প্লীজ রাশেদ , তুমি আমাদের উপর , এই পৃথিবীর উপর অভিমান করো না । আমরা সবাই তোমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছি ।
War
5
আত্ম উন্নয়ন মূলক অনেক বই লেখা হয়েছে। এদের বেশিরভাগ লেখা হয়েছে ইউরোপীয় চিন্তাধারার আলোকে । বাস্তবতা হল মুসলিম ও ইউরোপীয় চিন্তাধারা আলাদা । যিনি ইসলামী চিন্তাধারা লালন করেন তাদের জন্য এই বইটি (মুসলিম যুবসমাজের ক্যারিয়ার গঠন ও দক্ষতা উন্নয়ন) নতুন পথের দিশা দিবে ।
Motivational
6
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-ইনফার্নো লেখক-ড্যান ব্রাউন অনুবাদ- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ধরন- থ্রিলার পৃষ্ঠা-৫২৮ মূল্য-৪৬০ প্রকাশনী- বাতিঘর মার্কিন লেখক ড্যান ব্রাউন রচিত রহস্য ও রোমাঞ্চ উপন্যাস হলো "ইনফার্নো"। এটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৩ সালে। ইনফার্নো লেখকের সৃষ্ট চরিত্র রবার্ট ল্যাংডনকে নিয়ে চতুর্থ বই। ইতালীয় বিখ্যাত কবি দান্তের মহাকাব্য 'দ্য ডিভাইন কমেডির একটা অংশ হলো "ইনফার্নো"। যার অর্থ ভূগর্ভস্থ জগত বা নরক। "আমি সেই ছায়া। বিচরণ করি বিষাদময় শহরে। আজন্ম বিষাদের মধ্য দিয়ে আমি ঘুরে বেড়াই সেখানে।" উপন্যাসের কাহিনীর শুরু ফ্লোরেন্স শহরে। সিম্বলজিস্ট রবার্ট ল্যাংডন জ্ঞান ফিরে নিজকে আবিষ্কার করেন হাসপাতালে। নিজের আবাস স্থল আমেরিকা ছেড়ে সে কিভাবে এতোদূর ফ্লোরেন্স শহরের হাসপাতালে পৌছালো সেটা তার অজানা । জ্ঞান ফেরার পরই তার অনুভূত হয় প্রচন্ড মাথা ব্যাথা। জ্ঞান ফিরে পাবার আগে তার সাথে কি হয়েছিলো, কিভাবে সে এখানে এলো এসবের কোনো কিছু সম্পর্কেই তার কোন স্মৃতি নেই। সে মনেই করতে পারলো না কি করে কি হলো! ডাক্তাররা তাকে জানায়, সে সাময়িক এমনেশিয়ায় আক্রান্ত হয়েছে । স্মৃতিভ্রষ্ট ল্যাংডনের মাথায় তখন একটি শব্দই প্রতিধ্বনিত হতে থাকে। তা হলো, ‘খুজলেই পাবে।’ খুজতে গিয়ে তার প্রিয় ঘড়ি মিকি মাউসটাকে পেলো না। তার বদলে জামার পকেটে পাওয়া যায় অদ্ভুত আর ভীতিকর একটি জিনিস। এটা কিভাবে তার কাছে এলো সে সম্পর্কেও সে কিছু জানে না। প্রচন্ড ব্যথায় তিনি বুঝতে পারলেন মাথায় কোন অপারেশান করা হয়েছে। কি হয়েছে, কেন হলো, কিভাবে হলো এর পিছনে কে বা কারা আছে এসব কিছুই যখন গুলিয়ে যাচ্ছে, গোঁদের উপর বিষফোড়ার মতো তার উপর হামলা চালায় আবারো। পরিস্থিতি থেকে পরিত্রানের জন্য ফোন করেন তার এসেম্বিতে। কিন্তু সেখান থেকেও সাহায্যের বদল আসে অন্য কিছু। এ অবস্থায় রবার্টের কাছে সব কিছুই এলোমেলো হয়ে যায়। এরপর ঘটতে থাকে একের পর পর এক আতঙ্কিত ঘটনা। এদিকে রবার্টের সাথে জড়িয়ে পড়ে এক মেয়ে চরিত্র। তারা একত্রে ছুটতে থাকে এ জীবন লড়াই-এ। একটু একটু করে যখন রহস্যের সমাধান করতে থাকে ঠিক তখন জানতে পারে ভয়াবহ এক তথ্য। বুঝতে পারে শুধু মাত্র তারাই নয়, তাদের সাথে পুরো মানবজাতির জীবন মারাত্মক হুমকির মুখে। বর্তমান বিশ্বের প্রধান সমস্যা হলো জনসংখ্যার আধিক্য। পৃথিবীতে সম্পদের তুলনায় জনসংখ্যা বর্ধিত হওয়ায়, সমস্যা তীব্র হচ্ছে। তার থেকে পরিত্রানের লক্ষে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বিভিন্ন রকম পদক্ষেপ নিচ্ছে। উপন্যাসে এসবের বিবরণও এসেছে। কিন্তু রবার্ট রহস্যের কিনারা করতে গিয়ে জানতে পারেন অদ্ভূত প্রযুক্তির কথা , যার মাধ্যমে মানব সম্প্রদায়ের অর্ধেকেরও বেশি কোন প্রকার রোগ, মৃত্যু ছাড়াই কমে যাবে। পরিস্থিতির এই ভয়াবহতা বুঝতে পরেই রবার্টের দৌড়ঝাপ শুরু হয়। সে দৌড়ঝাপে সম্মুখীন হতে হয় বিভিন্ন প্রতিকুলতার । ড্যানব্রাউন প্রায়ই রবার্ট কে ফেলে দেন প্রতারনার ফাঁদে। এখানেও কি তেমনটাই হবে, নাকি ব্যতিক্রম কিছু! ড্যান ব্রাউন, কাহিনীর প্রয়োজন বা শুধু মাত্র ইতিহাস রচনার জন্য হলেও তার কাহিনীর বুনটে অনেকটা দখলদারী থাকে ইতিহাসের। ইনফার্নোতেও আছে তেমনি। বিখ্যাত দুইটা রাজ্যের নাম সহ ইনফার্নোর ইতিহাসের সাথে যুক্ত হয়েছে মানবসমাজের সংস্কৃতি এবং বাস্তব সমস্যাগুলো। উপন্যাসে মনীষি দান্তের বিখ্যাত কিছু উক্তি উল্ল্যেখিত হয়েছে। "যারা ক্রাইসিসের সময় ভালো এবং মন্দের মধ্যে নিরপেক্ষতা বজায় রাখে, নরকে তাদের জন্য বরাদ্দ রয়েছে সবচেয়ে খারাপ স্থান"। ড্যান ব্রাউনের ইনফার্নো পাঠককে আরো একবার জড়িয়ে ফেলবে কোড, সিম্বল, ইতিহাস আর ঘূর্ণনের ষড়যন্ত্রের জালে। উপন্যাসে একজন সুন্দরী নারী চরিত্র আছেন রবার্টকে সাহায্য করার জন্য। কাহিনীর মোড়ে মোড়ে টুইস্ট এবং অনেক তথ্যবহুল উপন্যাস। লেখক প্রায় সময়েই পাঠককে বেশ কিছুটা ঘোরের মধ্যে রাখেন । ইনফার্নোও তার ব্যতিক্রম কিছু নয়। ড্যান ব্রাউনের অারেক গুন সব কিছুর বিশদ বিবরন। তবে তার জন্য অনেক কিছুর ইতিহাস জানতে পারা যায়। এক্ষেত্রেও লেখক কোন কৃপনতা করেন নি। গল্পের কাহিনীর প্রথম থেকই বেশ জমজমাট করতে পারলেও শেষ সময় বেশ কিছুটা হতাশ হতে হয়। বিষয় টা এমন, এতগুলোর পৃষ্ঠার বই পড়েও শেষে মনে হয় যেন, লেখক হুট করে লেখা থামিয়ে দিয়েছেন। নাজিম উদ্দীনের অনুবাদ বেশ ভালো মনে হয়েছে। বানান ভুল ছিলো কিছু।তা ছাড়া আর তেমন কোন সমস্যা হয়নি। উপন্যাসের প্রথম পাতা থেকে শুরু করে প্রতি পাতাতেই রহস্য বিরাজমান এর ফলে সম্পূর্ণ উপন্যাস ছিলো টানটান উত্তেজনার। আর লেখক সেটা বেশ সাবলীল ভাবেই শেষ পর্যন্ত টেনে গেছেন। রেটিং-৪.৮/৫ রকমারি লিংক- https://www.rokomari.com/book/67693/ইনফার্নো
Thriller
1
"নেতৃত্বের প্রাথমিক বোঝাপড়া" বইয়ের কিছু কথা: আঁধার রাতের মুসাফির অনুসন্ধিৎসু চোখে শুধুই আলো খুঁজে ফিরে। কাফেলাকে মঞ্জিলে পৌঁছাতে আলোক মশাল তখন অনিবার্য দিশা। নিকষ আঁধারের দুনিয়া এখন বড্ড দিশেহারা। মুক্তি কোথায়? টলোমলো জাহাজকে কে তীরে ভিড়াবে? আজ বড় প্রয়োজন একঝাঁক দক্ষ নাবিকের। প্রত্যাশিত নাবিকদের উদ্দ্যেশ্যে ‘নেতৃত্বের প্রাথমিক বোঝাপড়া’ "নেতৃত্বের প্রাথমিক বোঝাপড়া" বইয়ের সূচিপত্র: নেতৃত্ব কী এবং কেন....১৫ নেতা কে....১৫ নেতৃত্ব কী....১৫ নেতৃত্ব কেন....১৭ কে নেতা....১৯ নেতৃত্বের দায়িত্ব....১৯ নেতৃত্ব বুঝার উপায়....২২ নেতা ও অনুসারী....২৩ নেতার মৌলিক দায়িত্ব......২৬ লক্ষ্য অর্জন করা....২৬ ঐক্য প্রতিষ্ঠা করা....৩০ অনুসারীর প্রয়ােজন পূরণ করা....৩০ নেতৃত্বের উপাদান......৩১ এক, গুণাগুণ....৩১ দুই. দৃষ্টিভঙ্গি....৩৭ তিন. দক্ষতা....৩৮ চার. মূল্যবােধ....৪৬ নেতৃত্বের প্রভাব উস........৫০ আমলাতান্ত্রিক উৎস- পদের প্রভাব....৫০ নৈতিক উৎস- চারিত্রিক গুণাবলি....৫০ যান্ত্রিক উৎস- তথ্য ও জ্ঞান....৫১ ব্যক্তিগত সম্পর্ক....৫১ আর্থিক উৎস....৫১ মানুষকে প্রভাবিত করার কিছু কৌশল....৫২ মানুষকে পরিচালনা ও নিয়ন্ত্রণ করার মৌলিক নীতি....৫২ মানুষকে পরিবর্তন করার কৌশল....৫৫ নেতৃত্বের স্তরসমূহ......৫৭ প্রথম স্তর: পদ-নির্ভর নেতৃত্ব....৫৮ দ্বিতীয় স্তর: সম্পর্ক-নির্ভর নেতৃত্ব....৬২ তৃতীয় স্তর: উৎপাদন-নির্ভর নেতৃত্ব....৬৪ চতুর্থ স্তর: দান-প্রতিদান নির্ভর নেতৃত্ব....৬৬ পঞ্চম স্তর: মূল্যবােধ ও চরিত্র-নির্ভর নেতৃত্ব....৬৮ নেতৃত্বের ধরন, পরিণতি ও ফলাফল......৭২ এক, মানবিক নেতৃত্ব....৭২ দুই. গণতান্ত্রিক নেতৃত্ব....৭৪ তিন. স্বৈরাচারী নেতৃত্ব....৭৫ চার. হালছাড়া নেতৃত্ব....৭৭ বিভিন্ন পেশায় নেতৃত্বের প্রাসঙ্গিকতা......৭৯ পরিচ্ছন্নতায় নেতৃত্ব....৭৯ কম্পিউটিং-এ নেতৃত্ব....৮০ শিক্ষকতায় নেতৃত্ব....৮১ ডাক্তারিতে নেতৃত্ব....৮১ ইঞ্জিনিয়ারিং-এ নেতৃত্ব....৮৩ প্রশাসনে নেতৃত্ব....৮৩ পুলিশে নেতৃত্ব....৮৪ ব্যবসায় নেতৃত্ব....৮৫ রন্ধন পেশায় নেতৃত্ব....৮৫ শিল্প প্রতিষ্ঠায় নেতৃত্ব....৮৬ গবেষণায় নেতৃত্ব....৮৭ সাংবাদিকতায় নেতৃত্ব....৮৭ সামরিক বাহিনীতে নেতৃত্ব....৮৮ কৃষিতে নেতৃত্ব....৮৯ হিসাবরক্ষণ ও ব্যাংকিং পেশায় নেতৃত্ব....৯০ গৃহে নেতৃত্ব....৯১ সংকটে করণীয় ও ভালাে নেতৃত্বের লক্ষণ .........১২২ সংকটময় সময় নেতৃত্বের করণীয়....১২২ পরিস্থিতির বিশ্লেষণ....১২৩ সংযােগ ও সংশ্লিষ্টতা বৃদ্ধি....১২৩ মূল্যবােধ, পরিবেশ, সংস্কৃতি আর ভিশন উপস্থাপন....১২৪ করণীয় নির্ধারণ....১২৪ দৃশ্যমান অবস্থান....১২৪ প্রতিকূল পরিস্থিতিতে বর্জনীয়....১২৫ উন্নত নেতার কয়েকটি লক্ষণ....১২৫ বিবিধ........১২৮ নেতা জন্মে নাকি তৈরি হয়....১২৮ নেতৃত্ব ও জীবনের সফলতা....১২৯ নেতৃত্বের পরিপ্রেক্ষিত নির্ভরতা....১২৯ নেতৃত্ব এবং ইমােশনাল ইন্টিলিজেন্স....১৩০ ৩৬০ ডিগ্রি লিডারশীপ....১৩১ সামগ্রিক নেতৃত্ব....১৩২ নেতৃত্ব ও সম্মােহনী ক্ষমতা....১৩২ বস বনাম নেতা....১৩৩ অন্যের নেতৃত্বের উন্নয়ন হলে লাভ কী....১৩৪ নেতৃত্ব ও মাতৃভাষা....১৩৫ পরিবারে নেতৃত্বের স্তর....১৩৬ সমাপ্তি......১৩৭ নেতৃত্ব নিয়ে মনীষীগণের অমিয় বাণীসমূহ....১৩৮ নেতৃত্বের প্রাথমিক বােঝাপড়ার উৎসসমূহ....১৪২
Motivational
6
বিশ্ববিখ্যাত ঔপন্যাসিক ফ্রানজ কাফকার 'রূপান্তর' বইটি পড়লাম। অন্য কোন লেখকের লেখা হলে 'রূপান্তর'-কে সরাসরি ফ্যান্টাসি নির্ভর রচনা বলে আখ্যায়িত করা যেত। কিন্তু লেখক ফ্রানজ কাফকার মত লেখক বলেই তা সম্ভব হচ্ছে না। ফ্রানজ কাফকার অন্যান্য লেখা যেমন নির্দিষ্ট বিষয়ের ওপর প্রতিনিধিত্বমূলক অর্থাৎ লেখায় একটা বিষয়ের ওপর ফোকাস করা হলেও রূপক অর্থে অন্য বিষয়কে ইঙ্গিত করা হয়, তেমনি 'রুপান্তর'-এও তা-ই হয়েছে। মোটামুটি অবিশ্বাস্যরকমের কাহিনীর ওপর ভিত্তি করে রচিত এই উপন্যাসিকার মাধ্যমে লেখক গভীর জীবনবোধের প্রতি নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির বহিঃপ্রকাশ ঘটিয়েছেন। বইয়ের গল্পটির মূল চরিত্র গ্রেগর সামসা (সেই শুনতে শুনতে ক্লিশে হয়ে যাওয়া অথচ বুকে বেদনার ঝড় তোলে যে নামটি) একজন ভ্রাম্যমাণ সেলসম্যান, যাকে নিত্যদিন ভোর চারটার ট্রেন ধরতে হয় অফিসের জন্য, এক সকালে ঘুম ভেঙে দেখল চার পেরিয়ে পেরিয়ে সাত বেজে যাচ্ছে, রোজকার সময়ে তার ঘুম ভাঙেনি বরং সে বিছানায় চিৎ হয়ে শুয়ে আছে স্বাভাবিকের চেয়ে বড় আকারের এক পোকা হয়ে।আমি জানতাম এখান থেকেই শুরু গল্পটা। গ্রেগরের পোকায় রূপান্তর হবার সকালটি থেকে, কিন্তু পড়তে পড়তে আবিষ্কার করি মূল গল্প শুরু হয় তখন—যখন বেলা বাড়ে, গ্রেগর তার রুমের বন্ধ দরোজার ওপাশ থেকে জান্তব কণ্ঠে কথা বলতে থাকে, তার অফিসের বড় কেরানী চলে আসেন খোঁজ নিতে কী হলো এমন যে, অফিসে যেতে পারেনি সে? গ্রেগর এর কিছুক্ষণ পর মুখ দিয়ে চাবি কামড়ে ধরে কোনো রকমে নিজের দরোজা খুলে উঁকি মারে বাইরে, তার পোকায় রূপান্তরিত অবস্থা দেখে মা অজ্ঞান হয়ে যান, কেরানী দৌড় মারেন এবং বাবা ভয় পান—ক্রোধান্বিত হন, কেরানীর ফেলে যাওয়া ছড়িটা নিয়ে তার দিকে ধেয়ে আসেন, গ্রেগরকে বাধ্য করেন নিজের রুমে ফিরে যেতে।এখন এই যে হুট করে একটা মানুষ, যে কি না পরিবারের একমাত্র উপার্জনক্ষম লোক আর খুব কর্মঠ, জীবন যার কাছে কঠিন হলেও স্বপ্নগুলো মরে যায়নি, মা-বাবা আর সতেরোয় পড়া ছোটবোন গ্রেটিকে নিয়ে মোটামুটি সুখের সংসার—কেনইবা এক সকালে সে পোকা হয়ে যায় আঁৎকা? পুরো বিষয়টাকে সরলাংকে জাদু বাস্তবতা বলে মনে হয়, আসলে কি তাই? রূপান্তর নিখাদ বাস্তবতার গল্প, নিরেট এবং এক নিম্নমধ্যবিত্ত জার্মান পরিবারের। সেখানে কারো হুট করেই আকাশে উড়ে যাবার সম্ভাবনা নেই আবার নেই আলাদিনের জাদুর চেরাগে ঘষা দিয়ে দৈত্য বয়ে আনবার অবকাশ। এ দুটি উদাহরণই মেটাফোরিক মহত্ব মণ্ডিত, আমি বলছি না গল্পে অমন হওয়াটা অস্বাভাবিক—গল্প তৈরিই হয় গরু ও ঝড় থেকে আবার গরু-ঝড় গল্পে আসে বাস্তব থেকেই। গার্সিয়া মার্কেসের উড়তে উড়তে হারিয়ে যাওয়া সুন্দরী রেমেদিওস কিংবা মিলান কুন্ডেরার দেবদূতগণ আমাদের মনে বিষণ্ণতা আনে, ভিতরটা কুরে খেতে শুরু করে না। গল্পটায় পরিষ্কার হয়ে ওঠে কাফকার ফ্যান্টাসি নির্মম—যেহেতু তার পৃথিবীটিও নির্মম (গল্পের অবকাশহীন অথচ গল্পময়)।গ্রেগর সামসা সকাল-সন্ধ্যা হাড়ভাঙা পরিশ্রমেই অর্থ উপার্জন করে, ছুটির দিনগুলোয় পরিবার নিয়ে চলে যায় কোনো অবকাশ যাপন কেন্দ্রে, এ ছাড়া আর কোনো নতুনত্ব তাদের জীবনে ছিল না। কাফকা ঠিক এই স্বাভাবিকতার মাঝে ভয়ঙ্কর গোলযোগ তৈরির জন্য সামসার মেটামরফোসিস কল্পনা করলেন, তাকে বানিয়ে দিলেন পোকা। পোকাটি খোলাচোখে কিম্ভুত, স্বাভাবিক আকৃতির চেয়ে বড় একটা মাকড় কিন্তু আবিষ্কার করতে হয় সে আসলে এক অস্বস্তি—চারপাশ যে নিয়মে চলছে, তার বিরুদ্ধে সে একটা ব্যতিক্রম। যে পুত্রটি ছাড়া পরিবারের কোনো গতি ছিল না, সবার কাছে সে ছিল উন্নতি ও সমৃদ্ধির জীবন্ত প্রত্যাশা, হঠাৎ রূপান্তরে পরিবারের সকলের চোখে তার অবস্থান কেমন বদলে যেতে শুরু করে, আমরা নির্মমভাবে টের পেতে থাকি, এটাই মূলত রূপান্তর।গ্রেগরের প্রতি নিষ্ঠুরতায় সবচেয়ে এগিয়ে থাকেন তার বাবা, বৃদ্ধ বয়সে আবার তাকে উপার্জনে নামতে হবে, ক্লান্ত শরীরটিকে আবার নামাতে হবে পথে; এর সমস্ত দায় তিনি চাপিয়ে দেন গ্রেগরের ওপর, তাকে আহত করেন, এমনকি পারিবারিক যেকোন অঘটনে নিশ্চিত ধারণা করে নেন, ওতে হাত (অজস্র পা) আছে পোকায় রূপান্তরিত হওয়া তার পুত্রটির। অপর দিকে অবশ্য দেখা যায় আকস্মিক ধাক্কা কাটিয়ে উঠবার পর গ্রেগর সামসার মা পুত্রের জন্য ভালোবাসা টের পান, তিনি তাকে দেখতে চান এমনকি তার রুমটিতে মাঝেমধ্যে উঁকি মারেন, যেখানে একটি সোফার নিচে কেটে যাচ্ছিল গ্রেগরের দিবস রজনী। শুধু দেখা যায় গ্রেটি—গ্রেগরের একমাত্র বোন, ভাইয়ের প্রতি স্বাভাবিক খেয়াল ধরে রাখতে সংগ্রাম করে যাচ্ছে। তাকে খাওয়াচ্ছে, ঘরদোর পরিষ্কার করে দিয়ে যাচ্ছে, তখন আমরা গল্পকারের জবানিতে শুনতে পাচ্ছি—এ বোনটির মিউজিক স্কুলে ভর্তি হবার বড় শখ—সে চমৎকার বেহালা বাজায়, আসছে ক্রিসমাসেই গ্রেগর ঠিক করেছিল তাকে মিউজিক স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেবে, যত অর্থই লাগুক না কেন। গ্রেগর ভিতরে ভিতরে অনুতপ্ত হয়, পরিবারের এ দুর্দশা আর স্বপ্নভঙ্গের জন্য তার এমন কিম্ভুত পরিবর্তনটাই তো দায়ী অথচ তার কিছু করার নেই, নিয়তি এখানে সবচে বিমূর্ত হয়ে আমাদের কাছে আত্মপ্রকাশ করে।গ্রেগর সামসা কাফকার মানস চরিত্র হয়ে দাঁড়ায় স্বাভাবিকভাবেই, অপছন্দনীয় পেশাগত দায়িত্ব থেকে মুক্তি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষায় (গ্রেগর চাকরি ছেড়ে দেবার পরিকল্পনা করে মনে মনে, হাতে টাকা জমলে যে অন্য কিছু করবার স্বপ্ন দেখে, তার চাকরির মূল কারণ কোম্পানির বড় কর্তার কাছে বাবার-মায়ের পূর্বোক্ত ঋণগুলো শোধ করা) শিকার হয় নিয়তির—রূপান্তরিত হয় পোকায়। পুঁজিবাদি নিষ্ঠুরতা, কোম্পানির হর্তাকর্তাদের কর্মচারীদের সাথে দুর্ব্যবহার, কথায় কথায় চাকুরি হারিয়ে ফেলবার ঝুঁকি—এসমস্ত বিষয় স্বাভাবিকভাবেই এক স্বাধীনচেতা মানবসত্তায় শেকলের মতো অনুভূত হবে। পোকায় রূপান্তরিত হবার পরেও তার মাঝে আমরা আবিষ্কার করি শিল্পের ক্ষুধাটি অক্ষুণ্ণ থেকে যেতে, বাসার উটকো ভাড়াটেদের যখন তার বোন বেহালা বাজিয়ে শোনায়, নিজের কক্ষটি ছেড়ে সে ওই সঙ্গীতের মোহে বেরিয়ে আসে সকল বিপদের আশঙ্কা তুচ্ছ করে। এই শিল্পভুক সামসাকে তখন আবিষ্কার করতে হয় বাস্তবতার নিষ্পেষণে ক্লান্ত বিধ্বস্ত সারা পৃথিবীর মুক্তিকামী মানুষের আত্মা হিসেবে।একমাত্র বোন গ্রেটি, যে ভাইয়ের জন্য অগাধ স্নেহে পোকায় বদলে যাবার পরেও তাকে ত্যাগ করতে পারে না, এমনকি সেও এক সময় বিরক্ত-হতাশ হয়ে পড়ে, অথচ গ্রেগর নিজে কিন্তু স্বাভাবিক থাকে, মানসিকভাবে সে থেকে যায় আগের সেই উজ্জ্বল যুবকটি। পরিবারের সবাই যে তার এই মাকড়ে বদলে যাওয়া অবয়বটিকে ঘৃণা করছে—বিষয়টা তাকে প্রতিমুহূর্তেই বেদনায় ডুবিয়ে দেয়। কিন্তু তার করবার কিছু থাকে না যেহেতু নিশ্চিতভাবেই একটা পোকা পুনরায় আর মানুষ হয়ে উঠতে পারে না, কেন পারে না? গল্পে আমরা কী দেখতে পাই? স্বাভাবিকতায় সামান্য পরিবর্তনও মানুষ গ্রহণ করতে পারে না, এমনকি তা নিতান্ত আপনজনের ক্ষেত্রেও, তাহলে হুট করে সমাজের কোনো পরিবর্তন, নতুন কোনো সম্ভাবনা মানুষ কিভাবে মেনে নেবে? আঁৎকা চারপাশের যেকোন পরিবর্তনই মানুষ প্রথম দফায় নেতিবাচকতা ও নিষ্ঠুরতার সাথে গ্রহণ করে, কাফকা তার এই গল্পটিতে সেটাও কি পরিষ্কার করে আঁকেননি? অনেকে ঠিক এ জায়গাটিতেই সাহিত্যে তার নবুয়্যাত আবিষ্কার করেন, বলেন—কাফকা তার সাহিত্য জীবন পার করেছেন আসলে প্রফেসির মাঝে, তার লেখাগুলোয় আমরা আবিষ্কার করেছি নিজ সময়ের পরে ঘটবে এমন অজস্র ঘটনা। তার সময়ে পৃথিবী বদলে যাচ্ছিল, সে বদলের আগমনী সংকেত বাজছিল বাতাসে, পৃথিবীর মানচিত্রে আসছিল বড় কোনো পরিবর্তন, আসছিল যুদ্ধ ও মৃত্যু। পরিবর্তন তো আমাদের জীবনকে এলোমেলো করে দিয়ে যায়, বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই—কাফকার গহন জীবনবোধ বইতে থাকা মগজ ঘূর্ণিবায়ুর মতো এ পরিবর্তনের আঁচে হয়ত নিয়ত বিধ্বস্ত হতো, ক্লান্ত কিংবা উনিয়তি এড়ানো সম্ভব না হলেও তার বিরুদ্ধে কাফকা দাঁড়ান নতুন এক স্বপ্ন নিয়ে, হতাশায় নিমজ্জিত সামসা পরিবারের গল্পটির শেষ টানতে চান এক আশাবাদ ব্যাক্ত করেই—যেহেতু কঠিন পৃথিবী কখনোই মানুষের জীবন অভিমুখী যাত্রাটিকে থামিয়ে দিতে পারে না, একজন লেখক হিসেবে আশা ছেড়ে দিতে রাজি ছিলেন না কাফকাও। তিনি দেখতে পান জীবন তো থেমে থাকে না, যুদ্ধ-মৃত্যু-ঝড় একে বিধ্বস্ত করবার ক্ষমতা রাখে কিন্তু ওতে সমস্ত আশা নিভে যায় না—সেটি টিমটিমে হয়েও জ্বলতে চেষ্টা করে।দ্দীপ্ত হতো, না হওয়াটাই ছিল অস্বাভাবিকতা।পাঠক বইটি পড়ে ভিন্ন স্বাদ পাবেন তাই বলব মিস না করে তাড়াতাড়ি পড়ে ফেলুন আশাকরি আপনাদের ভাল লাগার খোঁড়াক হবে বইটি।
Fiction
0
বুক রিভিউ : বইয়ের নাম: দখল লেখক: লতিফুল ইসলাম শিবলী প্রকাশনা: নালন্দা প্রচ্ছদ: মো: হাসিব উজ্জামান "শহরের ভেতর এক গোপন শহর দখলের লড়াই" শহরের নাম ঢাকা। এই চিরচেনা ঢাকার অলিতে গলিতে সুপ্ত থাকা অচেনা জগতের রোজকার লড়াই নিয়েই দখল। যে জগতে ভালোবাসা বলে কোনো শব্দের মূল্যায়ন হয়না সেই জগতেই ভালবাসা ঢুকে পরে। আর চেনা শান্তজল ঘোলা করতেও যেন ভালবাসা'ই দায়ী। অশান্তকে শান্ত করে আর শান্তকে করে তুলে অশান্ত। দুইয়ের এই ব্যতিক্রমধর্মী পরিবর্তনে শুরু হয় গোপন যুদ্ধ। এই যুদ্ধ ছড়িয়ে পরে শহরের আড়ালে থাকা আরেকটা গোপন শহরের আনাচেকানাচে। চলতে থাকে হৃদয় দখলের মাতাল যুদ্ধ। কবি অনিন্দ্য আকাশ কবিতা লেখে জেনিফারকে কেন্দ্র করে। আর জেনিফার কবির কবিতায় মুগ্ধ। যে মুগ্ধতায় কোনো রকমের কৃত্রিমতা নেই। থাকতে পারেনা। কবি অনিন্দ্য আকাশ তার কবিতা জেনিফারকে মুগ্ধ করেছিল ঠিকই, কিন্তু নিজের করে পাবার যে আকাঙ্ক্ষা ছিল তার জন্য কি জেনিফার হৃদয় সে জয় করতে পেরেছিল? ঢাকার অন্ধকার জগতের অন্যতম আতঙ্ক হল জাহাঙ্গীর। প্রয়োজন ফুরালে সরকারীদল তাকে এড়িয়ে যায়। জাহাঙ্গীর ঢাকা শহরে রাজ করত সরকারীদলের ছায়া পেয়েছিল বলে। কিন্তু সে ছায়া সরে গেছে। ছায়া সরে যেতেই প্রশাসন মরিয়া হয়ে উঠেছে জাহাঙ্গীরকে ধরতে। কিন্তু পারেনি। সে লুকিয়ে ছিল প্রশাসনকে ফাঁকি দিয়ে। তবে ফাঁকি দিতে পারেনি ডেভিডকে। কোকের সাথে ঘুমের ঔষধ মিশিয়ে জাহাঙ্গীরকে অচেতন করে ধরা হয়েছে। বনখোরিয়া হল শহীদ চেয়ারম্যান -এর এলাকা। সেখান থেকে কিছুটা দূরে জাহাঙ্গীরকে নিয়ে আসা হয় জীবিত অবস্থায় গর্তে পুতে দেবে বলে। এটাই আন্ডারওয়ার্ল্ড এর নিয়ম। এই নিয়ম অতীতে কেউ ভঙ্গ করেনি। এমন কি ক্ষমতা থাকাকালীন সময়ে জাহাঙ্গীরও এই নিয়ম ভঙ্গ করেনি। কিন্তু আজ! আজ তার মনে হল নিয়মের পরিবর্তন হোক। তাই সে বিভিন্ন ভাবে ডেভিডকে উত্তেজিত করবার চেষ্টা করছে। যাতে ডেভিড উত্তেজিত হয়ে বন্দুকের ট্রিগার চেপে দেয় আর মৃত্যুওটা যেন সহজে হয়। কিন্তু ডেভিড উত্তেজিত হল না। সে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। কিছুতেই নিয়মের ব্যতিক্রম হতে দেয়া যায়না। কবি ও জেনিফা ঝোপের আড়ালে ডেভিড বাহিনীর কর্মকাণ্ড দেখছে। এসব দেখে কবি চেপে গেলেও জেনি নিজেকে আর আড়াল করল না। সরাসরি প্রতিবাদ করতে মুখোমুখি হল ডেভিডের। মুখোমুখি হবার আগে কবি অনিন্দ্য আকাশের উদ্দেশ্য বলে,' তাহলে কবিতায় এসব লেখ কেন?' "বন্ধু তোমার বেঁচে থাকার দাবিতে আমার বুক হবে প্রাচীরের মতো প্রতিবন্ধক ঘাতকের লক্ষ বুলেট প্রতিহত হবে এই বুকে..." জেনিফা আন্ডারওয়ার্ল্ড এর পুরোনো নিয়মটা ভেঙ্গে দিল তার বুদ্ধিমত্তা, সাহস আর ভালবাসা দিয়ে। কিন্তু কবি অনিদ্য আকাশ যখন রিসোর্টের রেস্টুরেন্ট এ জাহাঙ্গীরের মুখোমুখি হয়, তখন সে দাবি করে জেনি ডেভিড এর হাত থেকে জাহাঙ্গীরকে বাঁচায়নিনি, বাঁচিয়েছে তার কবিতা। বাঁচিয়েছে সে। পাঠক হিসেবে মতামত: শুরুতেই বলতে হয় গীতিকবি ও কথাসাহিত্যিক লতিফুল ইসলাম শিবলী (Latiful Islam Shibli) বরাবরই একজন সার্থক লেখক। তার সৃষ্টি "দখল" পাঠক সমাজকে নি:সন্দেহ দখল করে নেবার যোগ্যতা রাখে। লেখক 'দখল'-এ বলেছেন শহরের ভেতর আরেক শহরের কথা, বলেছেন অন্ধকার জগতে রাজ করা কিছু মানুষের কথা যারা রাষ্ট্রের মতো নাগরিকদের উপর ক্ষমতা আর গোপন নিয়ন্ত্রণ চালায়। সেখানে চলে পালাবদল। সেই অন্ধকার জগতে যুদ্ধ কখনো শেষ হয়না। চলতেই থাকে। শেষকথা : 'দখল' পাঠে পাঠকের মন লেখকের প্রতি এবং প্রাণবন্ত ভালবাসা দখলে যাবে।
Fiction
0
এক নিঃশ্বাসে না হলেও এক বসায় শেষ করার মত একটি উপন্যাস “নিষ্পত্তি” লেখক সাবলিল ভাষায়, খুবই সহজ ভাবে, কোথাও কোথাও আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহার উপন্যাসটির সৌন্দর্য আরো বাড়িয়ে দিয়েছে। উপন্যাসের চরিত্রগুলোর মধ্যে জব্বার চরিত্র একটি ব্যতিক্রমি চরিত্র, যা পাঠককে আনন্দের সাথে সাথে অনেক কিছু বোঝাতেও সক্ষম হবে। ওসি সাহেবের করুণ পরিণতি পাঠককে ব্যথিত করবে, লেখক হয়তো এটা চাইলে এড়াতে পারতেন। পরিশেষে, বহুল প্রতিক্ষিত ব্রেসলেটটি তার প্রকৃত ব্যক্তির নিকট অত্যন্ত নাটকীয়ভাবে, বহু কিছুর বিনিময়ে ঠিকই পৌঁছে যায়। বইটির পেছনে ব্যয়িত সময় এবং অর্থ কোনটায় বিফলে যাবে না, এটা ভাল ভাবেই আশা করা যায়।
Fiction
0
বইঃ মা লেখকঃ আনিসুল হক প্রকাশকালঃ ২০০৩ (প্রথম) পরবর্তীতে আরো পরিমার্জিত করে ২০০৪ এ নতুন করে প্রকাশিত হয়, এবং এরপর থেকে মুদ্রিত হয়েছে বেশ অনেকবার মুল্যঃ ২৫৫৳ (ছাড়ে) পৃষ্ঠা ঃ ২৭২ প্রকাশনীঃ সময় প্রকাশন ধরনঃ মুক্তিযুদ্ধ ভিত্তিক উপন্যাস সার-সংক্ষেপঃ আনিসুল হক কে নিয়ে অনেকে অনেক কথা বলেন অনেকে পছন্দ করেন না, আশা করি এরকম কিছু শোনা লাগবে না.. মা বাংলাদেশের সাহিত্যিক আনিসুল হক রচিত একটি উপন্যাস। লেখক এই কাহিনীর সন্ধান পান মুক্তিযোদ্ধা নাট্যব্যক্তিত্ব নাসিরউদ্দিন ইউসুফ বাচ্চুর কাছ থেকে । বাচ্চু শহীদ রুমির সহযোগী ছিলেন, রুমি, আজাদ, বাচ্চু, জুয়েল উপন্যাসের কাহিনী শহীদ মুক্তিযোদ্ধা মাগফার আহমেদ চৌধুরী আজাদ এবং তাঁর মায়ের জীবন নিয়ে । আজাদ ছিল তাঁর বাবা মায়ের একমাত্র সন্তান। শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন সেই সময়ের ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। আজাদের বাবা ইউনুস চৌধুরী ছিলেন ইঞ্জনিয়ার, টাতটা কোম্পানি তে কর্মরত ছিলেন, পোস্টিং ছিল কানপুর, আজাদের জন্ম সেখানে। বিন্দু নামের এক মেয়ে ছিল তাদের বসন্তের কারণে মেয়েটি মারা যায়, ভেঙ্গে পড়েন সাফিয়া।এরপরে আজাদের জন্ম, পরে আরেকটি ছেলে হয়, সেও মারা যায় আতুর ঘরে। আজাদের জন্ম ১১ জুলাই, ১৯৪৬। ভারত পাকিস্তান আলাদা হয় ১৯৪৭ সালে, এরপরে দেশে ফিরে আসেন আজাদের মা-বাবা, ব্যবসা শুরু করেন আর বিষয়-আশয় বাড়তে থাকে। আজাদ দের ইস্কাটনের বাড়ি ছিল সে সময়ের ঢাকার দর্শনীয় স্থান। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই বাড়ী টার রেকর্ড রয়ে গেছে ৩৫মিলিমিটার সেলুলয়েডে, “ডাকে পাখি, খোলো আঁখি দেখো সোনালি আকাশ, বহে ভোরের ও বাতাস” এ গান টি এই বাড়িতে ধারণকৃত।। ইউনুস চৌধুরীর সফলতার পেছনের গল্পে আজাদের মায়ের ভূমিকা অনেক আছে, তার পড়ার খরচ যে তিনিই দিয়েছিলেন। তিনি ছিলেন আত্মমর্যাদাবান। তাই তার স্বামী যখন দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তখন তিনি তা মেনে নেননি। ঠিক সেদিনই রাতে ছোট্ট আজাদকে নিয়ে শত বিলাসিতা আর প্রাচুর্যের জীবন ছেড়ে এক কাপড়ে আর বাবার দেয়া অবশিষ্ট গহনা হাতে নিয়ে নেমে ছিলেন যুদ্ধের মঞ্চে। আজাদের সাথে ছিল রিভলবার......। অনেক কষ্টে আজাদ কে মানুষ করেছেন... বইটা পড়লে বুঝতে পারবেন। কিভাবে অভাব অনটনকে সাথে রেখেই নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন এক সময় আজাদ এমএ পাস করে। বাবার মতই সুদর্শন ছিলেন তিনি। ঠিক সেই সময় দেশে শুরু হয় মুক্তিযুদ্ধ। আজাদের বন্ধুরা যোগ দেয় ঢাকার গেরিলা দলে। আজাদ মাকে বলে, আমিও যুদ্ধে যাব। মা তাকে অনুমতি দেন। ছেলে যুদ্ধে যায়। ঢাকায় ক্র্যাক প্লাটুন এর দলে তিনি ছিলেন। ১৯৭১ সালের ৩০ আগস্ট ধরা পড়ে রুমী, বদি, আলতাফ মাহমুদ, জুয়েল এবং আজাদ। কিন্তু আজাদের ওপরে পাকিস্তানীরা প্রচন্ড অত্যাচার চালিয়ে কথা বের করতে পারে না। তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে। ঐদিন আজাদ মা কে বলে, “মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো”। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন কিন্তু আর কোনোদিন ছেলের দেখা পাননি। সেদিনের পর থেকে মা কোনোদিন এক লোকমা ভাতও খাননি............ যুদ্ধের ১৪ বছর পরে ঠিক সেই ৩০ এ আগস্ট আজাদের মা মারা যান, মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে কবরে শায়িত করলে আকাশ থেকে ঝিরঝির করে ঝরতে থাকে বৃষ্টি। জাহানারা ইমামের ভাষায় তার রুমী আজাদেরা পুষ্প বৃষ্টি করছে স্বর্গ থেকে..................... ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তাঁর বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় । । এই গেরিলা দলটি তৎকালীন সময়ে “হিট এন্ড রান" পদ্ধতিতে অসংখ্য আক্রমণ পরিচালনা করে পাকিস্তানী সেনাবাহিনীর মধ্যে ব্যাপক ত্রাসের সঞ্চার করে । ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী রেইড চালিয়ে ক্র্যাক প্লাটুন এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় । আজাদের বাড়িতেও রেইড হয় , আজাদ তাঁর সহযোদ্ধাদের সাথে ধরা পড়েন । পাকিস্তানিরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে তথ্য জানতে চায় । প্রচণ্ড অত্যাচারের মাঝেও তারা আজাদের মুখ থেকে কিছু বের করতে পারে না । তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-ধাম ইত্যাদি বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে । আজাদের মা ছেলেকে বলেন কিছুই না বলতে । আজাদ বলে, মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন বন্দিশিবিরে, কিন্তু ছেলের দেখা মেলে না। আজাদের মা আর কোনোদিনও জীবনে ভাত খাননি। যুদ্ধের ১৪ বছর পরে মা মারা যান, নিঃস্ব, রিক্ত-বেশে। মুক্তিযোদ্ধারা তাঁকে কবরে শায়িত করলে আকাশ থেকে ঝিরঝির করে ঝরতে থাকে বৃষ্টি । পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ যেহেতু পুরো ঘটনা টা বাস্তব তাই খুব বেশি কিছু বলার নেই, বইটা পড়ে মন খারাপ হয়ে যায় খুব.........। আজাদের মায়ের চরিত্র টা এত শক্তিশালী, এত ইচ্ছাশক্তি, আজকে আমাদের অনেকের ই নেই, সম্পুর্ন রিক্ত হাতে নেমে এক ছেলে কে এম এ পাস করানো এটা কি সহজ ছিল?? না সহজ না। লেখকের ভূমিকা বেশ ভালো, সব তথ্য সংগ্রহ করে সাজানো কাজ টি বেশ নিপুণ ভাবে করেছেন। এই বই দিয়ে আজাদ আর তার মা বেঁচে থাক অনন্ত যুগ। রেটিংঃ ৫/৫
War
5
বইটির নাম ঃ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের ট্রাজেডি পৃথিবীতে এ পর্যন্ত যতগুলো যুদ্ধ হয়ে গেছে তার মধ্যে ভয়াবহ এ যুদ্ধের ট্র্যাজেডি সম্পর্কে বইটিতে আলোচনা করা হয়েছে। এই বইটিতে বিশ্বযুদ্ধের দুই পক্ষের বিষয় গুলো আলোচনা করা হয়েছে। বইটিতে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রথম দিকের কথা, হিটলারের বিস্ময়কর উত্থানের কথা, সে সময় সমরস্ত উৎপাদনের হিড়িক, জার্মানির আণবিক বোমা তৈরীর চেষ্টা, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের কারণ, রুশ জাপান গোপন চুক্তি, রণাঙ্গন ইতালির ইতিহাস, 44 দিনে জার্মানি ফ্রান্স দখলের ইতিহাস, লন্ডনের জার্মান বিমানবাহিনীর 57 দিন একাধারে গোলাবর্ষণের ইতিহাস, হিটলারের রাশিয়া অভিযান, হিটলারের ইহুদি বিদ্বেষের পটভূমি, ইহুদিদের ষড়যন্ত্র, চীন-জাপান যুদ্ধ জার্মানির আত্মসমর্পণ, মিএ বাহিনীর কাছে জাপানের আত্মসমর্পণ, যুদ্ধের ধাক্কায় ব্রিটিশদের ভারত ত্যাগ বিষয়গুলো বর্ণনা করা হয়েছে। বইটি শেষদিকে সুভাষ বসুর রহস্য ময় মৃত্যুর কথা বলা হয়েছে।
Political
3
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম- চিলেকোঠার সেপাই জনরা-উপন্যাস ঔপন্যাসিক-আখতারুজ্জামান ইলিয়াস পৃষ্ঠা-৩০২ মূল্য-৩৩০ বাংলা উপন্যাস সাহিত্যে বিরলপ্রজ ঔপন্যাসিক আখতারুজ্জামান ইলিয়াস। তাঁর "চিলেকোঠার সেপাই" বাংলা উপন্যাস জগতে বহুল পঠিত উপন্যাস। ১৯৮৬ সালে প্রকাশিত হয়। এই উপন্যাসের ঘটনাপ্রবাহ মূলত দুটি রেখায় বিন্যস্ত হয়েছে। ১.ঊনসত্তরের গনঅভ্যূত্থান কালে উত্তল রাজনৈতিক শহর ঢাকা। ২.শ্রেনী-সংঘাত গ্রামীন জনপদের আশ্রয়ে নির্মিত হয়েছে উপন্যাসের বহির্রাবরন। চরিত্র ওসমানের আত্মসন্ধান, আত্মরক্তক্ষরণ ও আত্ম-উজ্জীবনের চেতনাস্রোত মূলত "চিলেকোটার সেপাই" এর মৌল জীবনার্থ। দুটি ঘটনার সমান্তরালে এবং সংঘর্ষে নির্মিত হয়েছে এই উপন্যাসের জীবনবৃত্ত। ঊনসত্তরের অভ্যূত্থানকালীন সময়ের চিত্র-পূর্ব ও পশ্চিম পাকিস্তানের মধ্যে অর্থনৈতিক ও প্রশাসনিক বৈষম্য অনেক। সোনার দাম পূর্ব পাকিস্তান থেকে পশ্চিম পাকিস্তানে কম। কাগজ তৈরি হয় পূর্ব পাকিস্তানে কিন্তু সেই কাগজ কিনবার বেলায় দিগুন দাম দিতে হয় তাদেরেই। পূর্ব পাকিস্তানের কৃষকেরা শরীরের রক্ত পানি করে পাট ফালায়। আর এই পাট বেঁচে ফেঁপে উঠে লাহোর করাচি ইসলামাবাদ। কোন প্রশাসনিক কাজে উপরের দিকে একটাও বাঙালি অফিসার নেই। আইয়ুব শাসনের বিরুদ্ধে বাঙালির সংঘবদ্ধ আন্দোলন শুরু হয়। মিটিং-মিছিল, শ্লোগান, হরতালে উত্তাল ঢাকা শহর। ইতিহাস থেকে এর চিত্র নিয়ে ঔপন্যাসিক উপন্যাসে প্রতিস্থাপন করেছেন। এই উপন্যাসের পটভূমি ঊনসত্তরের উত্তাল সমাজ রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ। মধ্যবিত্ত শ্রেনীর ব্যক্তি সর্বস্ব, আত্মপ্রেম ও চেতনা প্রবল গণআন্দোলনের টানে কিভাবে চিলেকোঠার বিচ্ছিন্ন জগৎ থেকে বেরিয়ে আসে এই উপন্যাসের অন্যতম চরিত্র ওসমান গণি তার দৃষ্টান্ত। কেরানি ওসমান পুরাতন ঢাকার এক চিলেকোঠার ভাড়াটে বাসিন্দা। তার পরিবারের সবাই ভারতে। গণঅভ্যূত্থানের প্রথম দিকে দর্শকের মতো তার গতিবিধি। সে রাজনীতি সচেতন হলেও আত্মমগ্ন। একসময় সংগ্রাম মিছিল, রক্তপাত, পুলিশের গুলিতে মৃত্যুতে শিহরিত হয়ে প্রবল আকর্ষণে মনোজগত থেকে বাস্তবতায় ফিরে আসে। একসময় রাজনীতি তার কাছে মনে হতো বুদ্ধি বিলাস। কিন্তু এক অস্ফুস্ট চেতনাবীজ থেকে তার ভেতরে জন্ম দেয় সংগ্রামী ভাবনা। উপন্যাসের জমিনে রহমত উল্লাহ ও খয়বর গাজী পাকিস্তানি শাসক চক্রের সেবায় অনুগত দাস। তারা বর্গাচাষীদের নির্মমভাবে শোষণ করে। তার নির্দেশে গ্রামাঞ্চলে বর্গাচাষীদের গরু চুরি করে জমা করা হয় চরের এক গোপন আস্তানায়। গ্রামের মানুষ একসময় আলীবক্সের নেতৃত্বে পুঁড়িয়ে দেয় খয়বর গাজীর ট্যান্ডল হোসেন আলীর আস্তানা। বিপ্লবী কর্মী আলী বক্সের শিষ্য হলো চেংটু। গ্রামের মানুষ সবাই একত্র হয়ে খয়বর গাজীকে শাস্তি দেওয়ার জন্য বৈরাগীর ভিটা পরিস্কার করে।খয়বর গাজী নামাজ পড়ার জন্য সময় চায়। একসময় আওয়ামীলীগ এর মিছিল এসে সব এলো মেলো করে দেয়। খয়বর গাজী পালিয়ে এক নেতার আশ্রয়ে চলে যায়। শহুরে রাজনীতির হাওয়া লেগে পাল্টে যায় গ্রামীণ আবহ। ব্যক্তিগত মতামতঃ ঊনসত্তরের প্রবল গণআন্দোলনের টানে জাতীয় মুক্তির সম্ভাবনার পথ উন্মুক্ত হলেও সাধারণ মানুষের জীবনের গুনগত কোন রূপ পরিবর্তন হয় না। ঔপন্যাসিক নিরাসক্ত দৃষ্টিতে রাজনীতির এই অন্তঃস্বরূপকে প্রতক্ষ্য করেন। উপন্যাসের বিষয় মূলত মধ্যবিত্তের আত্মবিশ্লেষণ ও আত্মরূপান্তেরর স্বরূপ অন্বষেণের প্রেরণাই মুখ্য। আশির দশকে সেনাতন্ত্র আর স্বৈরতন্ত্র বিনাশী কার্যক্রম এবং মধ্যবিত্তের দোদুল্যমান প্রতিবাদ বা সংগ্রামের অভিজ্ঞতা ঔপন্যাসিককে এই সত্য অন্বেষনে উদ্বুদ্ধ করেছে। পুরো ঔপন্যাসে একমাত্র অস্তিত্ববাদী চরিত্র ওসমান। যে শেষ পর্যন্ত খুঁজে ফিরে স্বাধীনতা আর মুক্তি। অনুভূতি লোপ পেয়ে যায় তখন। পছন্দের একটি উপন্যাস। ১৯৬৯ কে উপজীব্য করে লেখা ভালো লাগার এই উপন্যাসে ঔপন্যাসিকের শব্দ বিন্যাস এবং চরিত্র গঠন যে কোন পাঠককে বিমোহিত করবে । রাজনীতিকে পটভুমি করে অসম্ভব চমৎকার একটি উপন্যাস। উপন্যাসে অনুভব করা যায় শহর আর গ্রামের মানুষের সংঘাতময় অবস্থা। https://www.rokomari.com/book/80178/চিলেকোঠার-সেপাই(প্রথম-উপন্যাস)
Fiction
0
ইতিহাস নিয়ে বহু পুরোনো কথা এই যে ‘ইতিহাসে পরাজিত মানুষের কথা লেখা থাকে না।’ তবে সাব অলটার্নবাদীরা এখন নানা তথ্য-প্রমাণের ভিত্তিতে এই কথাকে এক রকম ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন। সমাজ-সভ্যতার গলিপথে ঢুঁ দিয়ে দেখিয়েছেন, জয়-পরাজয়ের বাইরে ইতিহাসের অন্য উঠোনও আছে। সেই উঠোনে দাঁড়িয়ে মাহবুব আলমের গুপ্তধনের খোঁজে বইটি পড়তে গিয়ে পাওয়া গেল ইতিহাসের মধ্যে আলো-আঁধারে থাকা পার্শ্ব ইতিহাসকে। যেমন, বাংলার স্বাধীন সুলতান শিহাবুদ্দিন বায়েজিদ শাহ চীনের মিং সম্রাট ইয়োং-লোকে একটি জিরাফ উপহার পাঠিয়েছিলেন—এই সাদা-কালো তথ্যকে উপজীব্য করে ‘বাংলার সুলতান, চীনের সম্রাট, আফ্রিকার জিরাফ’ নামে বইয়ের প্রথম প্রবন্ধে তিনি যেমন চৈনিক সভ্যতার সঙ্গে বাংলা মল্লুকের যোগাযোগকে খোলাসা করেছেন, তেমনই চীনের ধর্ম-দর্শন, সংস্কারগুলোও অলিখিত থাকেনি। কেবল এই রচনাতেই নয়, বইয়ের ১২টি প্রবন্ধেই ছড়িয়ে আছে ইতিহাসের অনালোচিত টুকরা টুকরা নানা প্রসঙ্গ, পার্শ্ব ইতিহাস। বইটির শিরোনামের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একটি পঙিক্ত, ‘ইতিহাসের বিচিত্র সরস কাহিনি’। হ্যাঁ, ‘বিচিত্র সরস কাহিনি’ই বটে! তাই তো ‘বিদ্রোহী যুবরাজ শাহজাহান ঢাকায়’ শীর্ষক রচনায় জানা যাচ্ছে, মোগল সম্রাট জাহাঙ্গীর জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত তাঁর বিদ্রোহী পুত্র শাহজাহানকে ‘বিদৌলত’ বা ভাগ্যহীন নামে সম্বোধন করেছিলেন। অথবা ‘নিজের চরকায় তেল দাও’ শিরোনামে লেখায় এই প্রবাদটি নিয়ে কথা পাড়তে পাড়তে লেখক যখন বলে যান বাঙালির চরকা-কাহিনির আদ্যোপান্ত ও সমাচার দর্পণ-এর বরাত দিয়ে শান্তিপুরের এক অসহায় চরকা-কাটুনির প্রসঙ্গও যখন অনুল্লিখিত থাকে না, তখন বইটিকে অন্য রকম সম্মান না দিয়ে উপায় কী! লেখক মাহবুব আলম ইতিহাস নিয়ে নাড়াচাড়া করছেন দীর্ঘদিন। বইয়ের মুখবন্ধে তিনি লিখেছেন, ‘পাঠ্যবইয়ের গণ্ডি পেরিয়ে প্রশস্ত রাজপথ ছেড়ে শুরু হলো ইতিহাসের মেঠোপথে ঘুরে বেড়ানো।... হাঁটতে গিয়ে চোখে পড়ে দেখা না-দেখা নানা চরিত্র, জানা যায় নানা তুচ্ছ কাহিনি, যার ভেতর বিগত দিনের মানুষ, সমাজ ও সংস্কৃতি ভেসে ওঠে। রবীন্দ্রনাথ যাকে বলেছেন ইতিহাসের চূর্ণ।’ ‘ইতিহাসের চূর্ণ’ হাতড়াতে গিয়েই যেন-বা তিনি পেয়েছেন গুপ্তধন। রচনা করেছেন গুপ্তধনের খোঁজে। এই বইয়ে ইতিহাস উঠে এসেছে অনেকটা গল্পের আদলে। সেই সঙ্গে লেখকের অনুপম ভাষাভঙ্গি একে নিয়ে গেছে অন্য উচ্চতায়। একটি উদাহরণ দেওয়া যাক, ‘নিজের চরকায় তেল দাও’ প্রবন্ধে ইংল্যান্ডে শিল্পবিপ্লবের কারণে বাংলার চরকাজীবীদের দুরবস্থার বর্ণনা দিতে গিয়ে তিনি লিখেছেন, ‘সেখানে কলের যুগ শুরু হওয়ায় সুদূর বাংলার সুতা-কাটুনিদের ভরা জোয়ারের সংসারে মরা কটাল নেমে এল।’ বিষয়বস্তু, তথ্য-উপাত্ত এবং বয়ানকৌশল—সব দিক থেকে গুপ্তধনের খোঁজে গ্রন্থটি পাঠককে প্রকৃতই গুপ্তধনের খোঁজ দেবে।
War
5
অসাধারণ বলবো হাজি মহব্বতজান স্কুলের বর্ণনার জন্য।বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীতে বিজ্ঞান কম থাকলেও ক্ষতি নেই।কিন্তু স্কুলটা ফাটিয়েছে।এখনকার স্কুলগুলোয় নানা ধরণের পরীক্ষার চাপে বাচ্চারা সব শেখে-শুধু আসল দুনিয়াটাই চিনতে পারে না।নিজেরা কী হতে চায় বুঝতে পারে না।ছোটদের জগতের বড় জাদুকর আমাদের জাফর ইকবাল স্যার!
Science-Fiction
4
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা অক্টোবর রিভিউ-১৫ পৃথিবীর যেসব প্রেমকাহিনী কালজয়ী হয়েছে, তার প্রায় সবই প্রেমের অতৃপ্তি, না পাওয়ার বেদনার কারণে। হরিশংকর জলদাসের ' এখন তুমি কেমন আছ' ঠিক সেই রকমই প্রেম- বিরহের একটি উপন্যাস। তমোনাশ- বহ্নি ৩৪ বছর আগে বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে সহপাঠী ছিল। তারুণ্যের টানে প্রেম- ভালোবাসায় জড়িয়েছে তারা। ভুল- বোঝাবুঝি পরিণয় সূত্রে আবদ্ধ হতে দেয় নি। এখন তারা ৬০ এর কোঠায়। হঠাৎ তমোনাশের একটা ফোনকল নিবিড়ভাবে সংসারধর্ম পালনকারী বহ্নিকে নিয়ে চলে যায় ৩৪ বছর আগেকার স্মৃতির সাগরে। তমোনাশের প্রতি ক্ষোভ, ঘৃণা, কষ্ট - কোনোটিই লুকোরে পারেনি বড়লোক স্বামী, সুখী সংসার ও মেধাবী সন্তানের জননী বহ্নি। কিন্তু তমোনাশ ততোটাই স্থিতধী। এমনকি কথা কচলিয়ে ভুল ভাঙাতে সক্ষম হয় যে, সে বহ্নির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে নি। বাবার হঠাৎ মৃত্যু, সংসারের পুরো দায়ভার কাঁধে পড়া, এমএ পরীক্ষা দিতে না পারাই ছিল বহ্নির সঙ্গে বিচ্ছেদের কারন। আর বহ্নি আবিষ্কার করে, স্বামী - সংসারে সুখ- সমৃদ্ধি, আর্থিক প্রতিপত্তি কোন কিছুরই অভাব না থাকলেও সে এত দিন শুধু অভিনয় করে গেছে স্বামী বীরেন্দ্রের সঙ্গে! আসলে তমোনাশককে ভুলে থাকা তার পক্ষে সম্ভব ছিল না। সন্দেহ নেই, তমোনাশ - বহ্নিই উপন্যাসের প্রধান চরিত্র। তাদের অচরিতার্থ প্রেমকাহিনীই উপন্যাসের প্রধান উপজীব্য বিষয়। তবুও উপন্যাসের অন্য পিঠে বর্তমান সময়ের নাগরিক জীবনের ব্যস্ততার কারণে অভিভাবকদের সান্নিধ্য না পেয়ে বালক- বালিকারা কীভাবে বখে যায়, তা চিত্রিত হয়েছে তিন্নি- গৌরাঙ্গ আর আফরোজা - মার্শালের প্রেমের স্বরূপ উন্মোচনের মধ্য দিয়ে। উপন্যাসে প্রেম রূপায়ণের মধ্য দিয়ে যে সমাজবাস্তবতার চিত্র উঠে এসেছে, তা উপন্যাসকে অনন্য মাত্রা দিয়েছে। লেখকের নির্মিত চরিত্রে সাবলীল সংলাপ, আত্মকথন, ভাষার সারল্য পাঠককে নির্বিঘ্নে নিয়ে যায় উপন্যাসের শেষ প্রান্তে। তবে ভাষার ব্যবহার কখনো কখনো শালীনতাকে ছাড়িয়ে গেছে বললে অতুক্তি হবে না। এ ধরনের কিছু ছোটখাটো সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও হরিশংকর জলদাসের ' এখন তুমি কেমন আছ' উপন্যাসটি নিঃসন্দেহে সুখপাঠ্য। #বইয়ের_নাম : এখন তুমি কেমন আছ লেখক : হরিশংকর জলদাস দাম :২২০ টাকা
Fiction
0
"রিচ ড্যাড'স ক্যাশফ্লো কোয়াড্র্যান্ট" বইয়ের ফ্ল্যাপের লেখা: বইটিতে তিনি অর্থোপার্জনের বিভিন্ন উৎসের ব্যাখ্যা করেছেন। তুলে ধরেছেন সেগুলাের ইতিবাচক ও নেতিবাচক দিক, কার্যপ্রণালী, ভালাে দিক, খারাপ দিক, ঝুঁকিসমূহ। চাকুরী নিরাপত্তা অর্জন নাকি আর্থিকভাবে মুক্তি লাভ। কোনটি বেশি কার্যকরী সে বিষয়েও বিস্তারিত ব্যাখ্যা তিনি করেছেন এই বইটিতে। খুবই সহজ ব্যাখ্যার মধ্য দিয়ে তুলে ধরেছেন সম্পদের প্রকৃত স্বরূপ। আপাত দৃষ্টিতে আমরা যেগুলােকে সম্পদ মনে করি, আদৌ সেগুলাে কী আমাদের জন্য। সম্পদ নাকি দায়, সে বিষয়েও বিস্তারিত আলােকপাত করেছেন। অর্থ উপার্জনের ক্ষেত্রে ধনীরা কী করে, আর গরিব বা মধ্যবিত্তরা কী করে সে বিষয়েও রয়েছে বিশদ বর্ণনা। তুলে ধরছেন, আমাদের করণীয় সাতটি ধাপ। বইটি পড়ে পাঠক সহজেই অর্থোপার্জনের ক্ষেত্রে নিজের প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাবে। সেই সাথে ধারণা পাবে নিজের লক্ষ্যার্জনের করণীয় বিভিন্ন
Motivational
6
হরিশংকর জলদাসের রঙ্গশালা উপন্যাসের কাহিনির যে বিস্তৃতি, তার উৎসমূল বইয়ের শেষ অধ্যায় ‘কুহেলিকা’। গল্পের নায়ক উপন্যাসের প্রথম থেকে শেষ পর্যন্ত সমাজ, জগৎ ও তার পরিপার্শ্ব নিয়ে দার্শনিকতা করে, গভীর সুরে কথা বলে জীবনের নানা পর্ব নিয়ে, এর মূলে আসলে তার নিজের জীবনের তিক্ত বিয়োগান্ত একটি ঘটনা। রঙ্গশালার নায়ককে শুরুতে আমরা পাই ঢাকায়। সে থাকে রমনা পার্কের শিরীষতলায়। ভিক্ষুকের বেশ। কিন্তু সেই ভিক্ষুকই যখন তার শ্রোতা এক অধ্যাপককে ‘জন্ম’, ‘অন্ন’, ‘বাসস্থান’, ‘ক্রোধ’, ‘লোভ’, ‘মোহ’, ‘মদ’, ‘মাৎসর্য’, ‘শিক্ষা’, ‘চিকিৎসা’ ও ‘মৃত্যু’ সম্পর্কে কথা বলে, একটু অবাকই লাগে তখন। অবাক এ কারণে যে, সাধারণ এক ভিক্ষুক জীবনের মূল দিকগুলো সম্পর্কে এত কথা জানল কী করে? এই প্রশ্নের জবাবে বলা যায়, দর্শন ও দার্শনিকতা তো কেবল শিক্ষিত মানুষের একচেটিয়া নয়। জীবনের ঘাত-প্রতিঘাত যে কাউকে দার্শনিক করে তুলতে পারে। খানিক বাদে আমরা যখন উপন্যাসটির শেষ অধ্যায় ‘কুহেলিকা’ পাঠ করছি, আমাদের কাছে স্পষ্ট হচ্ছে সবকিছু—রঙ্গশালার নায়ক আসলে ধারণ করে আছে ছদ্মবেশ। তার জীবনে একসময় আনন্দ ছিল, প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাও পেয়েছিল, ব্যক্তিগত ছিল পঠনপাঠনও, কিন্তু আকস্মিক এক ট্র্যাজিক ঘটনা আমূল বদলে দেয় তার জীবন। কিছুই করব না স্যার। বেঁচে থাকার জন্য আমার ভেতর যে দুর্নিবার লোভটি ছিল, তা এখন মরে গেছে। শোধ নেওয়ার যা, তা তো অনেক আগেই নিয়ে ফেলেছি। এখন মরণে ভয় নেই আমার। বাঁচা আর মরা এখন আমার কাছে সমান।’ রঙ্গশালার শেষে আমরা অনুধাবন করি, হৃদয়ের গভীর ক্ষত, দুঃখ আর বেদনাই জীবনের সেই অতলকে স্পর্শ করে। আর এই স্পর্শই হয়তো মানুষকে করে তোলে দার্শনিক।
Fiction
0
লেখকের অন্য থৃলারগুলোর মতই এই বইটি নিরাশ করে নি। দুইটি সময়ে একই সাথে কাহিনী এগিয়ে চলে, আবার এক সাথে বেশ কয়েকটি ঘটনা সমান্তরালে চলে । সেই সাথে চরিত্রগুলোকে খুব অসাধারণভাবে তৈরি করা হয়েছে। আশা করছি লেখক এই চরিত্রগুলোকে নিয়ে সামনে আরোও উপন্যাসের অবতারণা করবেন।
Thriller
1
যতটা আশা নিয়ে শুরু করেছিলাম, ততটা আশাহত হয়েছি বলব না; কিন্তু প্রত্যাশার সাথে প্রাপ্তির অনেক ঘাটতি ছিল। লেখক প্রচুর গবেষণা করে লিখেছেন বোঝাই যায়, দারুণ একটা প্লট হওয়া সত্ত্বেও মাঝারি মানের হিস্টোরিকাল থ্রিলার বলতে হবে। ব্যক্তিগত রেটিং ৩/৫
Thriller
1
জীবনের নির্মম বাস্তবতা আর চারপাশের সমাজ নামের বিষাক্ত স্বত্তার নিঃশ্বাসের মাঝেও কিছু মানুষ তাঁর স্বপ্নকে আগলে রাখে। বেঁচে থাকার তাগিদে ধরতে হয় ভিন্ন ভিন্ন রূপ । বেঁচে থাকার জন্য কখনো লালসার থাবার নিচে হতো হয় বেশ্যা, কখনো নিজের চোখে নিজেকে হারিয়ে হতো হয় আধার আমাবস্যা। কখনো টেপী হতে হয়, কখনো রেশমা হতে হয় আবার কখনো নিজের আপন পৃথিবীতে মিতু হয়ে ফিরে আসতে হয়। তবুও বাঁচতে ইচ্ছে করে, ভালোবাসা পেতে ইচ্ছা করে। মানুষ তো। জীবন যতই নির্মম হোক তবুক মানুষকে তাঁর আবেগ, স্বপ্নগুলো পশু হতে দেয় না। মানুষ করে রাখে। আর সেই সংগ্রামের আকাশে কোন একদিন সৌভাগ্যের চাঁদ ঝিমমিক করে। আর এই ব হুরূপী বেঁচে থাকার গল্পটা বেশ নিপুণভাবে উপস্থাপন করেছে লেখক। খামখেয়ালী চিন্তা আর বাস্তবতার প্রহারের এক অদ্ভুত যুগলবন্দী করেছেন লেখক বইটিতে আর লেখকের আর পাঁচটি হতে লেখাটিকে আলাদা করেছে
Fiction
0
আমি তপু গল্পের শুরু হয় আরিফুল ইসলাম তপুর নামে একজন কিশোরের নিজ বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। এক দুর্ঘটনায় তপু তার বাবাকে হারায় এবং তা মূলতঃ ছেলেটির গোটা জীবনটাকেই উলটপালট করে দেয়। স্বামীর মৃত্যুতে তপুর মা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে এবং স্বামীর মৃত্যুর জন্য নিজের ছেলে তপুকেই দোষারোপ করতে থাকে। ফলে তপুর জীবনে নেমে আসে ঘোর অন্ধকার। নিজের মায়ের কাছ থেকেই নিগৃহতার শিকার হতে থাকে সে। মায়ের ভয়ে তপুর বড় ভাই রাজীব এবং বড় বোন ঈশিতাও তপুর থেকে মুখ ঘুরিয়ে নেয়। শুধুমাত্র বাসার কাজের মহিলা দুলি খালাই তপুর প্রতি সহানুভূতিশীল আচরন করে। ক্রমেই এক সময়ের মেধাবী ছাত্র তপুর অবস্থা শোচনীয় রূপ নেয়। নিজের বাড়িতে কাজের ছেলের মত থাকে সে, স্কুলে হয়ে যায় সবচেয়ে খারাপ ছেলে আর রাস্তাঘাটে যাকে দেখলে খুব সহজেই চিহ্নিত করা যায় বখাটে হিসেবে। এভাবেই যখন তপুর জীবন ক্রমে ধ্বংসের দিকে ধাবিত হচ্ছিল তখন আগমন ঘটে প্রিয়াংকা নামের একটি মেয়ের। ক্লাসে নতুন আসা মেয়েটি তপুর বন্ধু হয়ে ওঠার চেষ্টা চালাতে থাকে। তপু যখন বাড়ি ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেয়, প্রিয়াংকাই তাকে ফিরিয়ে আনে। এরপর প্রিয়াংকার সান্নিধ্যে এসে তপু ধীরে ধীরে আবারো স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে থাকে। প্রিয়াংকা তাকে সাহায্য করে তার প্রতিভার সঠিক বিকাশ ঘটিয়ে পৃথিবীর কাছে প্রমাণ করতে যে তপু কোন ফেলনা ছেলে নয়, সে আসলে একটা জিনিয়াস। প্রিয়াঙ্কার মাধ্যমে তপু গণিত অলিম্পিয়াডে অংশ নেয় এবং দেশের বাঘা-বাঘা গণিতবিদদের তাক লাগিয়ে দেয় জটিল সমস্যার সমাধান করে। স্বয়ং প্রেসিডেন্ট তপুকে স্বর্ণপদক দিলেও পরিবারের সদস্যদের উপর তা কোন প্রভাব ফেলে না। বাড়িতে মায়ের কাছে সে সেই ঘৃণার পাত্রই রয়ে যায়। কিন্তু কাহিনীর শেষ পর্যায়ে এসে আবারো মায়ের সাথে তপুর পুনর্মিলন ঘটে, কিন্তু সে বড় অদ্ভুত এক পরিস্থিতিতে - যা ছিল তপুর জন্যে একই সাথে বড্ড আনন্দের আবার বড্ড দুঃখের।
Childrens-Book
2
প্রথমেই বলে রাখি খুব সহজ সরল ভাষা, প্রচন্ড হিউমার আর হালকা গিমিকের কারণে রবি ভাইয়ের লেখা আমার বরাবরই ভালো লাগে।। যার অন্যতম একটি উদাহরণ "চন্দ্রমুখী" উপন্যাসটি। বইমেলা থেকে আমার এবারের কেনা প্রথম বই চন্দ্রমুখী। মাত্র ৮৮ পৃষ্ঠার একটি উপন্যাস। প্রথমে ভেবেছিলাম ১ ঘন্টার মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। কিন্তু সেটা আর হয়নি। রাত ১.৩০ এ শুরু করেছিলাম। সেই বই শেষ করতে ৪ টা বাজছে। প্রথম ৪৫ পৃষ্ঠা একটানা পড়েছিলাম কিন্তু ৪৬ পৃষ্ঠা থেকে শুরু করার পর আর একটানা পড়তে পারিনি। এখান থেকেই মূলত আসল গল্পটা শুরু। এতো এক্সাইটমেন্ট আর গল্পের এতো গতির কারণে দুইবার বই রেখে ঘর দিয়ে পায়চারি করেছি আর ভেবেছি এর পর গল্পটা কোনদিকে যেতে পারে। এই গল্পের মূল চরিত্র ফরিদ। এই চরিত্রটি একাধারে সহজ সরল, একটু বোকা আর ইন্টারেস্টিং। এই গল্পের আরেকটি মূল চরিত্র মুনা। যে কিনা ফরিদের প্রেমে একেবারে অন্ধ। একটু ঘুরিয়ে ফিরিয়ে এই নায়িকার নামেই গল্পের নামকরণ। এই উপন্যাসের অন্যতম প্রধান এবং আমার প্রিয় চরিত্র মুনার বাবা, জনাব খালেকুজ্জামান। যিনি একাধারে রিয়ালিস্টিক, হিউমারাস এবং যথেষ্ট ইন্টারেস্টিং। নায়ক নায়িকার মিলন না হলেও যে একটা গল্প অসাধারণ হয়ে উঠতে পারে তার অন্যতম একটি উৎকৃষ্ট উদাহরণ "চন্দ্রমুখী" উপন্যাসটি।। "বাংলাদেশ হচ্ছে অর্ধেক ইতিহাসের দেশ। ইতিহাসের যে অংশটা অপ্রয়োজনীয়, সেটা খুব গুরুত্ব দিয়ে লেখা হয়। বাদ পড়ে যায় আসল অংশ।।" শুধুমাত্র এই তিনটা লাইনের কারণে চন্দ্রমুখী আমার কাছে অমর হয়ে থাকবে।। দুইটা জায়গায় আমার ছোট্ট দুইটা অবজারভেশন আছে। ফরিদের মায়ের আকস্মিক মৃত্যুটা আমার কাছে একটু অবাক লেগেছে। মৃত্যুর আগ পর্যন্ত তিনি মোটামুটি ঠিকঠাক এবং সুস্থ ছিলেন। এই জায়গাটা একটু অন্যরকম হলেও হতে পারতো। এছাড়া মুনা যেভাবে এসে ফরিদের বাসায় এবং ফরিদের বাবা মায়ের মনে অবস্থান নেয় এই অংশটায় একটু তাড়াহুড়ো মনে হয়ে। এই অংশটুকু আরেকটু বিস্তারিত হলে হয়তো ভালো হতো।। "চন্দ্রমুখী উপন্যাসটি বইমেলার ৩২৬-৩২৮ নং স্টল "আদর্শ প্রকাশনী" তে পাওয়া যাচ্ছে।। এরকম একটা বই কালেকশনে থাকায় লাভ ছাড়া এক ফোটা লস নেই।। রবি ভাই, একটা কথা বলি, বেয়াদবি নিয়েন না। ২০১৩ তে "কাগজের নৌকা"র চার বছর পরে "চন্দ্রমুখী" উপন্যাসটি পেলাম। বছরে অন্তত একটা করে এই চার বছরে চারটি উপন্যাস আমাদের দিতে পারতেন। সেই পাওয়া থেকে হয়তো আমরা বঞ্চিত হয়েছি। আশা করি পরের বছরগুলোতে আমাদের আর বঞ্চিত করবেন না।। ভালো থাকবেন রবি ভাই, অনেক অনেক ভালবাসা আর শুভকামনা রইলো।।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা। বই- মর্নিং নুন নাইট। লেখক- সিডনী শেলডন। অনুবাদ- অনীশ দাস অপু। ধরন- থ্রিলার, জীবনধর্মী। প্রকাশনী- অনিন্দ্য। প্রধান চরিত্র- হ্যারি ষ্ট্যানফোর্ড, টাইলার, উড্রো, কেন্ডাল, জুলিয়া, ষ্টিভ স্লোন, সিমন পিটজেরাল্ড, দিমিত্রি। হ্যারি ষ্ট্যানফোর্ড একজন আমেরিকান টাইকুন। তার তিন বৈধ সন্তান। দুই ছেলে ও এক মেয়ে। ছোট থাকতেই তাদের মা মারা যায়। বাবার সাথে তাদের কখনোই খুব ভালো সর্ম্পক গড়ায় না। টাইকুন বাবা হ্যারি সারাক্ষন ব্যবসা নিয়েই ব্যস্ত। ছেলেমেয়েরা বড় হয়, প্রতিষ্ঠিত হয়, সংসারি হয়, তবে বাবার সাথে তাদের শীতল সর্ম্পকের অবসান হয়না। তারা দিন গুনে কবে তাদের বাবা মারা যাবে এবং তারা বিশাল সম্পত্তির মালিক হবে। তাদের আশা পূর্ণ করে কর্সিকায় রহস্যজনক ভাবে ইয়ট থেকে পড়ে ডুবে মারা যায় হ্যারি ষ্ট্যানফোর্ড। তার মৃত্যুর সময় কাছাকাছি ছিলেন তার রাশান বডিগার্ড দিমিত্রি। হ্যারি মারা যাবার পর তার উইল নিয়ে গবেষনা শুরু হয় তিন ভাইবোন টাইলার, উড্রো ও কেন্ডাল। টাইলার একজন বিচারপতি এবং ব্যাক্তি জীবনে অবিবাহিত। একটা বিয়ে তার হয়েছিলো কিন্তু টেকেনি। উড্রো কিছুই করেনা। সে ছন্নছাড়া মানুষ। ঘটনাচক্রে একটি মেয়েকে সে বিয়ে করছে কিন্তু মেয়েটাকে নিয়মিতই মারধোর করে সে। আবার মারের পর আদরও কম করেনা। একমাত্র মেয়ে কেন্ডাল ফ্যাশন ডিজাইনার। কেন্ডাল বিবাহিত। স্বামীর সাথে তার সুখের সংসার। বাবার মৃত্যুর পর অনেকদিন পর তিন ভাইবোন একসাথে হয়। হ্যারি ষ্ট্যানফোর্ডের সম্পত্তির আইনি কাজকারবার সামলান রেনকুইষ্ট এন্ড পিটজেরাল্ড নামের একটি ল ফার্ম। সেখান থেকে এক আইনজীবি ষ্টিভ স্লোন যান হ্যারির লাশ নিয়ে আসতে। কিছু পুলিশি ঝামেলার পর হ্যারির লাশ তিনি নিয়ে আসেন এবং শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়। এবার আসে সম্পত্তির ব্যাপার। ল ফার্মের প্রধান সিমন পিটজেরাল্ড জানান সম্পত্তি তিনভাগ হওয়ার ব্যাপারে কিছু সমস্যা আছে। কেনোনা তাদের একজন সৎ বোন আছে। তাদের বাবা একবার একটা কেলেঙ্কারী করে সেখানে এক সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। এখন সে যদি এসে সম্পত্তির ভাগ চায় তবে তাকেও আইনিভাবে সম্পত্তির ভাগ দিতে হবে। শেষকৃত্যের পর রহস্যময় এক মেয়ে ঠিকই ফিরে আসে। সে নিজেকে হ্যারি ষ্ট্যানফোর্ডের সন্তান দাবী করে। টাইলার তা যাচাই করে দেখতে চান এবং পরীক্ষায় প্রমাণিত হয় সে সত্যিই হ্যারি ষ্ট্যানফোর্ডের মেয়ে। এদিকে হ্যারি ষ্ট্যানফোর্ডের আসল মেয়ে জুলিয়ার তখন জানাও নেই যে তার বাবা মারা গেছেন। বাবাকে তো কখনো দেখেইনি। তাহলে এখানে যে মেয়ে আসলো সে কে? এদিকে কেন্ডালকে কারা যেনো ব্ল্যাকমেইল করছে। একটা দুঘর্টনার জন্ম দিয়েছিলো কেন্ডাল। সেই থেকে তাকে ব্ল্যাকমেইল করছে কেউ। নিয়মিত সেখানে টাকা পাঠাতে পাঠাতে ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে কেন্ডাল। তার আশা সম্পত্তি পেলে মোটা অংকের টাকা পাঠিয়ে এই ব্ল্যাকমেইল বন্ধ করবে সে। উড্রো হেরোইনে আসক্ত। স্ত্রীকে নিয়মিত পেটায় সে। আবার স্ত্রীর প্রতি তার ভালোবাসাও আছে। মাদকাসক্তি কেন্দ্রে পাঠানোর পরও ওর হেরোইনের নেশা যায় না। অথচ ডাক্তারের মতে ওর হেরোইনের নেশা চলে যাবার কথা। তারমানে কেউ চালাকি করে ওকে হেরোইনে আসক্ত বানিয়ে রেখেছে। কে সে? সফল বিচারপতি টাইলারের জীবনে আছে কালো অতীত যা তার বাবাই কেবল জানতেন। এজন্য বাবার সাথে তার ছিলো অত্যন্ত খারাপ সর্ম্পক। টাইলারের আছে একজন ভালোবাসার মানুষ। তবে সেই ভালোবাসার মানুষ তার একার নয়। সে টাকার বিনিময়ে ভালোবাসা প্রদান করে। তাই তাকে পেতে হলে টাইলারের প্রয়োজন বাবার থেকে প্রাপ্ত সম্পত্তি কারন তার চাহিদা বেশ বড়। এদিকে এদের সবার রহস্যময় আচরন সন্দেহজনক লাগে ষ্টিভ স্লোনের। সেসময় হঠাৎ করে গায়েব হয়ে যায় টাইলারদের সৎ বোন জুলিয়া। আর সেসময় হুট করেই দৃশ্যপটে হাজির হয় আরেকটি মেয়ে যার দাবী সে হচ্ছে জুলিয়া। তবে নকল জুলিয়াটা কে এবং তার উদ্দেশ্যটাই বা কি? তখন কেনো তাহলে প্রমান হলো সে সত্যিই ষ্ট্যানফোর্ডের মেয়ে? কে এই লি যারজন্য টাইলার এতোকিছু করছে? দিমিত্রিই বা বডিগার্ডের আগে কি করতো? কে সেই ব্ল্যাকমেইলার যে কেন্ডালকে ব্ল্যাকমেইল করে টাকা নিচ্ছে? কি ছিলো সেই দুঘর্টনা যারজন্য কেন্ডাল পুলিশি আশ্রয়ও নিতে পারছেনা? কেনো এক খুনী খুন করতে চাচ্ছে আসল জুলিয়াকে? কে মাদকাসক্ত বানিয়েছে উড্রোকে? এসবের মধ্যে কি করে সংযোজিত হচ্ছে টাইলারের অতীত ও লি এর জড়িয়ে যাওয়া? এরকম অনেকগুলো প্রশ্ন থেকে যায় এবং জন্ম দেয় একের পর এক থ্রিলারের। এই বই এককথায় অসাধারন। চুম্বকের মতো ধরে রাখবে পাঠককে। একটা ব্যাপারের সাথে আরেকটা ব্যাপার এমনভাবে জড়িত যে ভাবাই যায় না। আপাতদৃষ্টিকে যেসব ব্যাপারকে সাধারন মনে হয় দেখা যায় সেসবই সবচেয়ে জটিল ব্যাপার হিসেবে আবির্ভূত হয়। তবে পাঠক সবচেয়ে বড় ধাক্কাটা খাবে টাইলারের অতীত ও বর্তমান ব্যাপারটা জানার পর। এমন এক সারপ্রাইয যে সেখানে থাকবে তা ভাবাই যায় না। কোনো সিরিয়াল কিলার নেই, পিশাচ খুনীও নেই। তারপরও এতো সুন্দর ভাবে একটা থ্রিলার সৃষ্টি করেছেন সিডনী শেলডন তা সত্যি বলার মতো না। সিডনী শেলডনের বইয়ের একটা আলাদা ধরন হচ্ছে তিনি থ্রিলার একটা বিষয় নিয়ে সীমাবদ্ধ রাখেন না। অনেকগুলো বিষয়ের মাঝে ছড়িয়ে দেন। সাধারনত অন্যান্য থ্রিলার বইতে দেখা যায় পুরো কাহিনী একটা বিষয়ের মাঝেই চক্রাকারে ঘুরপাক খায়। কিন্তু সিডনী শেলডনের বই এরচেয়ে একদম আলাদা। তিনি ছোটছোট কিছু থ্রিলার তৈরী রাখেন এবং একটা রাখেন মূল থ্রিলার। ছোট থ্রিলারগুলোর কিছু মূল থ্রিলারের সাথে সংযুক্ত থাকে, কিছু থাকেনা। কিন্তু পাঠকের মাথা ঘুরিয়ে দিতে কোনোকিছুই কমতি রাখেনা। এজন্যই তাকে বলা হয় মাষ্টার অব দ্য ষ্টোরী টেলার। সবাইকে বইটা পড়ার আহবান রইলো। রিভিউ পড়ার জন্য ধন্যবাদ। রেটিং- ৫.০০/৫.০০
Thriller
1
বাঙ্গালী হিসেবে আমাদের জীবনের সাথে মিশে আছে মুক্তিযুদ্ধ । মুক্তিযুদ্ধের কাহিনী পড়েনি এমন বাঙ্গালী বইপ্রেমী আছে কি?? যদি মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে জানতে সত্যিই আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে আর দেরী কেন? পড়ে ফেলুন এই বইটি ! বাঙ্গালী নন এমন কারো চোখে কেমন ছিল মুক্তিযুদ্ধ তা এত পরিষ্কারভাবে জানার সুযোগটা বোধহয় হাতছাড়া করা ঠিক হবে না!! বলে রাখা ভাল বইটিকে একটি সাধারণ গল্পের বই ভাবলে ভুল করবেন । আসলে একজন বিদেশী সাংবাদিকের লেখা মুক্তিযুদ্ধের উপর অসংখ্য খন্ড খন্ড প্রতিবেদনের সংকলন এ বইটি। তাই বইতে যে অনেক না জানা বাস্তবতা উঠে আসবে তা না বললেও চলে।। বইটির লেখক সিডনি শনবার্গ ছিলেন নিউ ইয়র্ক টাইমসের একজন সাংবাদিক। ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের সময় তিনি বাংলাদেশে ছিলেন। ছিলেন হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে। সেখান দিয়েই তিনি দেখেন ইতিহাসের এক ভয়ানক হত্যাকান্ড ।১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ এর হত্যাকান্ড তিনি খুব কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেন। তিনি পুরো যুদ্ধকালীন সময়ে মুক্তিযুদ্ধের উপর অসংখ্য খন্ড খন্ড প্রতিবেদন পাঠান যার অধিকাংশ ছিল শরণার্থী বিষয়ক। নিজের চোখে দেখা নানা ঘটনা প্রতিবেদন হিসেবে পাঠিয়েছেন নিউইয়র্ক টাইমস পত্রিকায়। তার প্রতিবেদন পড়ে পুরো বিশ্ব জানতে পারে পাক বাহিনীর নির্মম হত্যাযজ্ঞ এবং ভারতে অবস্থিত শরণার্থীদের অবস্থা ! তাই আমাদের মুক্তিযুদ্ধ বহির্বিশ্বের কাছে তুলে ধরতে তার অবদান অনেক তা বোঝা যায় বইটি পড়লে । আর কোন বিকৃতি নেই বলেই ধরে নেয়া যায় । “ডেটলাইন বাংলাদেশ : নাইন্টিন সেভেন্টিওয়ান’’ বইটিকে বাংলায় অনুবাদ করার জন্য ধন্যবাদ মফিদুল হককে । এমন সারেজমিন প্রতিবেদন বাংলায় পড়তে পারলে জানতে পারবেন অনেক কিছুই। তাই মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে সঠিক কিছু তথ্য পেতে সংগ্রহ করে পড়ে ফেলুন “ডেটলাইন বাংলাদেশ : নাইন্টিন সেভেন্টিওয়ান’’ বইটি ।।
War
5
ইতিহাসকে উপজীব্য করে উপন্যাস নির্মাণ বাংলাসাহিত্যে নতুন কিছু নয়। আমরা বরং বলতে পারি বঙ্কিমিয় কালপর্বের ধারাবাহিকতায় ক্রাচের কর্নেল-এর পর্বে আসলাম মাত্র। তবে ইতিহাস-নির্ভর উপন্যাস পাঠ করতে গিয়ে পাঠক হিসেবে আমাদের সামনে কিছু দাবি থাকে, যেমন- ইতিহাসের দায়ের সাথে শিল্পের দায় ষোলআনা পূরণ হওয়া চাই। ক্রাচের কর্নেল পাঠপূর্বে উল্টে-পাল্টে দেখতে গিয়ে আমাদের দৃষ্টি আটকে পড়ে দীর্ঘ রেফারেন্স-এর তালিকায়। ছোট্ট ভূমিকাটা দেখি: ‘নানা সূত্র থেকে পাওয়া, তথ্য এবং ভাবনাকে সৃজনশীল সংশ্লেষের মাধ্যমে উপন্যাসে উপস্থিত করেছি মাত্র।’ যদি তাই হয়, তবে ইতিহাসের দায়টা কোথায়, কোথায় রইলো শিল্পের দায়। প্রাপ্তসূত্র দিয়ে তো রিপোটিং হয়, সাহিত্য নয়। আবার শোনাকে ইতিহাসে রূপান্তর করারও নানা পদ্ধতি আছে, ক্রাচের কর্নেলে কোন পদ্ধতি প্রয়োগ হয়েছে। লেখক এইসব প্রশ্নে নির্বিকার হলেও পাঠের মধ্যদিয়ে আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর খুঁজে নেবার চেষ্টা করবো। উপন্যাসে আমরা প্রবেশ কররাম মিশুকের হাত ধরে, মিশুক এক আত্মহত্যাপ্রবণ তরুণ। যার কবিতার পঙ্ক্তিতে স্পষ্ট আত্মহত্যার ইঙ্গিত। এই মিশুক আর কেউ নয়, কর্নেল তাহেরে কনিষ্টপুত্র। এই মিশুক যার কাছে পিতার স্মৃতি মানেই ধূসর অন্ধকার। মিশুক ও তার প্রজন্মের আমরা এই উপন্যাসের ভিতর দিয়ে মিশুক তার পিতাকে আর পাঠক এক বিপ্লবের স্বপ্নচারি সৎ আর্মি অফিসারে জীবন চরিত্র উন্মোচন করতে যাচ্ছে। এই উন্মোচনের সূচনা হয় ইডেন কলেজের ছাত্রী লুতফার সাথে কর্নেল তাহেরের বিয়ের মধ্য দিয়ে। তাহের সদ্যবিবাহিত স্ত্রী নিয়ে ট্রেনে করে ঢাকা ফিরছে, পথে কাকতালিয়ভাবে দেখা মোজাফফর আহমদ আর মতিয়া চৌধুরীর সাথে। এই সাক্ষাতের মধ্যদিয়ে আমরা জানতে পারি লুতফাও একদা রাজনীতির সাথে যুক্ত ছিলেন। মোজাফফর মতিয়ার সাথে আলাপচারিতার ভিতর দিয়ে তাহেরের রাজনৈতিক চিন্তার সাথে পাঠকের কিছুটা পরিচয় ঘটলো। কিন্তু এই ট্রেনের কামরা থেকে আমাদের এক উল্লম্ফন দিতে হলো, ইতিহাসের নাতিদীর্ঘ বর্ণনা। ৪৭ থেকে ৬৯। লেখক যেন তার পাঠকের সামনে বাল্যশিক্ষা-ধারাপাত নিয়ে বসেছেন ইতিহাসের অ-আ-ক-খ শিখানোর জন্য। ইতিহাস যেখানে উপন্যাসের বিষয়, সেখানে ঘটনার পরম্পরায় ইতিহাসের বর্ণনা আসতেই পারে। আমাদের আপত্তি বর্ণনার ধরণ দেখে।
War
5
'মকবরা' উপন্যাসটিকে আমার পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলির একটির খেতাব দেওয়াই যায়।"গালি শোনার সাথে সাথেই ডাক বন্ধ হয়ে যায়। কুকুরগুলো ভদ্রঘরের মনে হয়।অপরাধবোধ প্রবল।গালি শুনেই থেমে গেল"-এই কথা দিয়েই উপন্যাসটির প্রতি ভালো লাগা শুরু হলো।চরিত্রহীন,ভবঘুরে,সংসারত্যাগী মজনুর পরবর্তী জীবনে স্ত্রী হাবিবার প্রতি ভালবাসা,মেয়েকে নিয়ে বেঁচে থাকার স্বপ্ন উপন্যাসটির প্রতি ভালবাসা জুগিয়েছে।ধনকুবের মাড়োয়ারি ব্যবসায়ী মোনাই সরকার,জিয়াউদ্দিন বারনি,ইব্রাহিম দালি,সেনাপতি ফখরুদ্দিন বনাম নবাব সরাজ খাঁর সিংহাসন বাঁচিয়ে রাখার লড়াই উপন্যাসটিকে প্রাণবন্ত করে তুলেছে।সিপাহি বহরম এই উপন্যাসের সর্বশ্রেষ্ঠ চরিত্র বলে আমার মনে হয়।শুরুর এই সাদাসিধে মানুষটিকে পানশালা,কবুতর এগুলোর মধ্যে রাখলেই মনে হয় লেখক ভালো করতেন।এত সহজ জীবন নিয়ে বাস করা মানুষটিকে জীবনের এত ওলটপালট সময় না দেখালেও পারতেন।যদিও তিনি নিজেই বলেছেন ইতিহাস রেশমের মত মোলায়েম নয়,তবুও লেখক বড়ই নিষ্ঠুর।'বহরমের মকবরা' শব্দটি দেখে চোখে জল চলে আসল।ভালবাসার অনেক চরিত্র যেমন: ঝুমকি,মখমলি,নরেন আরো অনেকে।কিন্তু বহরমকে যেন হৃদয়ের অন্য এক উচ্চস্থানে জায়গা দিতে মন চায়।বহরম এই উপন্যাসটিকে দিয়েছে অন্যরকম এক মায়া।যে মায়ায় জড়িয়ে যাবে যে কেউ।এর সাথে আবার জুড়ে বসেছে ত্রপা সুন্দরী। উপন্যাসের প্রায় অর্ধেক ফুরোনোর পর এই নারীর উদ্ভব হয়।শেষকালে এ নারীই মন জয় করে নেবে ভাবিনি।বহরাম-ত্রপা সুন্দরী-মজনু এই তিন অসাধারণ সুন্দর চরিত্রই উপন্যাসটিকে সর্বোচ্চ মাত্রায় সুন্দর করে তুলেছে।'জীবন: শেষ পাঠ' এই অধ্যায়টা সব উত্তর দিয়ে দিয়েছে,বিনিময়ে নিয়েছে ভালবাসা।একজন পাঠক হিসেবে লেখক কিঙ্কর আহসান সাহেব আমার কাছ থেকে ফুল মার্কস পাবেন,যদিও তিনি ভালবাসার বহরম কে কেড়ে নিয়েছেন তবুও এক অদ্ভুত সুন্দর 'মকবরা' পেয়েছি খুঁজে। # উপন্যাসের একটি অসম্ভব ভালো লাগার জায়গা যেটা পড়ে আমি অনুপ্রাণিত হয়েছি সেটা না লিখলেই নয়: * জীবন কি এখানেই থেমে যায়?দৃষ্টির ভেতর যা আসে,সবই ঝাপসা যেন। শিমুলগাছের অল্প কিছু তুলো পাখি হতে চায়।গুটিসুটি মেরে শরীরটা শামুক হয়।চাদর হয় খোলস।ওম ওম সুখে চোখে আধভাঙা ঘুম।জীবন এখানেই থেমে যাক না।শেষ যেই ভাবনাটা ছেড়ে দেওয়া হয়েছে হাওয়ার ওপর,তা নিয়েই না হয় পথ চলা হোক এক জীবন।অত হিসাব-নিকাশে লাভ নেই।মোহরের লোভে জীবন হয় ক্ষয়।কত চাওয়া,এলোমেলো স্বপ্নে ফানুস ওড়ানো।হায়রে এতে শান্তি নেই।সত্যি বলছি,স্বপ্ন ছাড়াও কেটে যায় পিঠেপিঠি দিনগুলো।একা থেকেও থাকা যায় ভালো।
Fiction
0
`অবজারভেশন' বইয়ের কিছু কথা : যেখানে অন্যরা কেবল পানির বাষ্প উঠতে দেখে সেখানে একজন পর্যবেক্ষক দেখেছেন বাষ্পীয় ইনজিন। যেখানে অন্যরা আকাশে পাখির স্বাধীন উড়ে চলা দেখে সেখানে পর্যবেক্ষকরা দেখেছেন মানুষের আকাশে উড়ার উপায়। যেখানে অন্যরা ব্যর্থতা দেখে সেখানে আপনি একজন পর্যবেক্ষক হয়ে দেখবেন সাফল্যের সম্ভাবনা। পর্যবেক্ষণ একটি জীবনভর প্রক্রিয়া এবং এর সুফল পাওয়া যায় সারা জীবন ধরে। সাধারণত পর্যবেক্ষণকে শিশুকাল থেকেই গুরুত্ব দেওয়ার কথা সবচেয়ে বেশি বলা হয়। শিশুশিক্ষা মানে কেবল মুখস্ত করানো বা অক্ষর চেনানো নয়, এর মানে হচ্ছে জগৎকে খুঁজে দেখা ও আবিষ্কার করা। আর এই আবিষ্কারকে আনন্দের ও অর্থবহ করার জন্যই মূলত দরকার পর্যবেক্ষণ। এখন এই তত্ত্ব আমাদের বড়দের জন্য, ব্যবসায়িক জগতের জন্যও সত্য। যেকোন নতুন ব্যবসা বা উদ্যোগের মানে এই নয় যে গতানুগতিক সেবাই গ্রাহকদের দিয়ে যেতে হবে। গ্রাহকদের জগৎকে খুঁজে দেখতে হবে এবং নতুন ও অভিনব উপায় আবিষ্কার করতে হবে যাতে গ্রাহকদের আর উন্নত সেবা দেওয়া যায়। আর ঠিক এই কাজটি করতেই আপনাকে সহায়তা করবে আপনার পর্যবেক্ষণ ক্ষমতা।
Motivational
6
বই: ভেন্ট্রিলোকুইস্ট জনরা: থ্রিলার লেখক: মাশুদুল হক প্রকাশনী: বাতিঘর প্রকাশ কাল: ৩য় সংস্করণ নভেম্বর ২০১৫ পৃষ্ঠা: ১৯১ প্রচ্ছদ: ডিলান মুদ্রিত মূল্য: ২০৯ ভেন্ট্রিলোকুইজম হচ্ছে শব্দকে ছুড়ে দেয়া, এটা এমন একটা কৌশল যাতে মনে হয় যে শব্দটা অন্য কোথাও থেকে অাসছে যেমন হতে পারে হাতে ধরা কোন পুতুলের মুখ থেকে। কেউ কেউ মনে করে অাত্মায় ভরে করে কথা বলা মানে উদর থেকে অন্যকারো অাত্মার মাধ্যমে কথা বলা। ভেন্ট্রিলোকুইজম বর্তমানে জনপ্রিয় পাপেট শো বা ম্যাজিক শো বলা যায়। ভেন্ট্রিলোকুইজম প্রাকটিকসকারী হচ্ছে ভেন্ট্রিলোকুইস্ট। কাহিনী সংক্ষেপ : অনেক বছর পরে প্রায় বছর দশকের পুরনো বন্ধুরা জহিরের বিয়েতে একত্রিত হয়। নানা রকম গল্পের সাথে তাদের স্কুল বন্ধু শওকতের প্রসঙ্গ অাসে। হাসানের কাছে শুনতে পায় শওকত ভেন্ট্রিলোকুইস্ট হিসেবে শো করে বেড়ায়। কিন্তু অাশ্চর্যের ব্যাপার হচ্ছে ইন্টারমিডিট পরীক্ষার মাস ছ'য়েক অাগে শওকত টাইফয়েডে অাক্রান্ত হয়, ফলে বাক শক্তি হারিয়ে ফেলে। তাহলে শো করে কেমনে, এই কৌতুহল থেকেই পত্রিকার ফিচার এডিটর রুমি অার গল্প কথক নৃতাত্ত্বিক মারুফ যায় শওকতের শো দেখতে। কথা প্রসঙ্গে শওকতের থেকে জানতে পারে রুনুর কথা যার অাত্মা ভর করে সে কাজ করে। কিছুটা রহস্যময় পরিবেশ সৃষ্টি করে ভরকে দেয় রুমি অার মারুফকে। কৌতুহলী হয়ে সেটার সন্ধান করতে গিয়ে একের পর এক রহস্যে জড়িয়ে পড়ে ওরা। রোমহর্ষক সব ভয়ঙ্কর সত্য সামনে চলে অাসে যা সাধারন মানুষের থেকে লুকিয়ে রাখা হয়। খোঁজ পায় বহু বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক সম্প্রদায়ের, যেখানে প্রতিপদক্ষেপে ওৎ পেতে আছে মৃত্যু, জড়িয়ে আছে ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষের জীবন। এই রহস্য থেকে মুক্তির উপায় কী তবে! জানতে হলে পড়তে হবে বইটা... নিজস্বমতামত: ভেন্ট্রিলোকুইস্ট কেবল একটি উপন্যাসই নয় অাছে ইতিহাস, গণিত, ধর্মতত্ত্ব আর বিজ্ঞানের এক অভূতপূর্ব সংমিশ্রণ। গণিতের ধাঁধায় অাবৃত রহস্যময় রুম অার চিকিৎসা বিজ্ঞান অার ধর্মতত্ত্বের ব্যাখা গুলো সবথেকে বেশী অাকর্ষণীয় ছিল। একটানা পড়ে যাওয়ার মত অাকর্ষণ সৃষ্টি করতে, পারছে লেখক। রহস্যাবৃত এ বইয়ে রুমির বুদ্ধিদিপ্ত ধাঁধার সমাধান পাঠক মনকে পুলকিত করে। টানটান উত্তেজনা নিয়ে একদম শেষ পর্যন্ত না পড়া পর্যন্ত বই রেখে উঠতেই মন চাচ্ছিল না। সব মিলিয়ে বেশ উপভোগ্য এক রহস্যময় কাহিনী।
Thriller
1
না ফেরার দেশটি এমন একটি দেশ, যেখানে কোন মানুষ গেলে আর কখনও পৃথিবীর বুকে ফিরে আসে না। এ দেশে কোন ব্যক্তি জীবিত অবস্থায় যেতে পারে না, যেতে হলে সারাজাহানের সবচেয়ে অপ্রিয় স্বাদটি গ্রহণ করে যেতে হয়। পৃথিবীর সবচেয়ে অপ্রিয় স্বাদটি হলো মৃত্যু স্বাদ। পশ্চিমা বিশ্বের নারীরা তাদের স্বামীকে মর্যাদা বা গুরুত্ব কতটুকু দিয়েছে, সে তর্কে নাইবা গেলাম। আমাদের সমাজে নারীরা তাদের স্বামীদেরকে মাথায় করে রাখতে পছন্দ এবং স্বাচ্ছন্দবোধ করে। আমাদের বাঙালী সমাজে নারীরা তাদের স্বামীদেরকে মাথার উপরে আকাশের ন্যায় ছাদ মনে করেই সাত্বনা খুঁজে নেয়। ঘরের উপর থেকে চাল বা ছাদ সরে গেলে যেমনি করে ঝড়-বৃষ্টি-রোদ এমনকি দস্যু বাহিনীর হাত থেকে নিজেদেরকে রক্ষা করা যায় না। অল্প বয়সে স্বামী মারা গেলে নারীর উপর প্রথম আক্রমণটাই হয় তার সতীত্বের উপর। ঢাল-তলোয়ার ছাড়াই নারীকে তীক্ষ্ম বুদ্ধি খরচ করে কঠোর হাতে সতীত্ব রক্ষা করতে হয়। সতীত্ব এমনই একটা সম্পদ যা একবার লুট হয়ে গেলে হাজারও মন্দলোকের হাজারো রকমের কু-দৃষ্টি, টিপ্পনী কাটা কথা, নানা রকমের কু-প্রস্তাবের হাতছানি। মকবুল মারা যাওয়ায় আয়েশার মাথার উপর রাজ্যের চিন্তা এসে ভর করেছে। একদিকে সংসারের প্রতিটি পরতে পরতে অভাবের বিষফোঁড়া বাসা বেঁধেছে, অন্যদিকে লুটেরাদের হাত থেকে নিজের রূপ-যৌবনকে রক্ষা করার জন্য যৌবন রসের উপর বাঁধ দিতে হচ্ছে। আজ প্রায় রাতেই আয়শা হাড় কাপানো ভয় নিয়ে রাত পার করে থাকে। বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যে হলেই টিনের উপর ঢিল মারার শব্দ, হাসি-কান্নার শব্দ শুনে আয়শা ভয়ে মুষড়ে পড়ে। আয়শা আল-কোরআনের বিভিন্ন সূরা পড়ে নিজের মধ্যে সাহস সঞ্চয় করে ঘুমিয়ে পড়ে।
Fiction
0
একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সাফল্য অর্জন করুন বইটি এমন নয় যে অনেক মনীষীদের উক্তি ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়ে ভরা। এমনকি এটা অনুপ্রেরণার উক্তিতেও যে ভরপুর তা নয়। অনেকের কাছে এটা সত্য নাও লাগতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এটা এমন এক বই যা পাঠ করলে আপনি আপনার দুই পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াবেন এবং একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ আরম্ভ করবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সাফল্য অর্জন করছেন। কথাটা জাদুর মতো মনে হলেও এটা পুরোপুরি সত্য। এই বইটি পুরোপুরি বাস্তবতা কেন্দ্রিক। বইটিতে বিশ্বের বড় বড় অসংখ্য লোকজনের সাফল্য যাত্রা সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে; তারা কী ধরনের বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছে এবং কীভাবে সেগুলোর মোকাবিলা করেছে তাও বলা হয়েছে। এসব ঘটনাবলি থেকে নেপোলিয়ন হিল কিছু সাধারণ সূত্র আবিষ্কার করেন যা যেকোন মানুষই তার জীবনে কাজে লাগাতে পারে। আর কেউ যদি এই সূত্রগুলো তার বাস্তব জীবনে কাজে লাগায় তবে তার জীবনে আমূল পরিবর্তন ঘটবে, যা অবশ্যই ইতিবাচক। বইটি থেকে আমরা অজস্র ভালো জিনিস শিখতে পারবো।
Motivational
6
বঙ্গবন্ধু সম্পর্কে অনেক অনেক মন্তব্য করে! আমি তাদের বলি বইটি পড়লে আপনাদের সব স্পষ্ট হয়ে যাবে। নতুন রূপে বঙ্গবন্ধু উঠে আসবে আপনাদের মাঝে। মনের মাঝে থাকবে না কোনো সন্দেহ। আমার বাবা একজন মুক্তিযোদ্ধা, তার কাছে যুদ্ধের অনেক গল্প ও বঙ্গবন্ধুর অনেক গল্প শুনেছি। পড়ার সময় মনে হয়েছে যেন আমি সেখানে উপস্থিত তার সাথে আমিও আছি! ভাবতেই শরীরে কাটা দেয়। বইটি বিস্তারিত পরলে আপনাদের ধারণা পুরোটাই পালটে যাবে। এক কথায় বলতে গেলে, এতদিন বঙ্গুবন্ধু কে আমি আমার হৃদয়ের উপরে স্থান দিয়েছিলাম, এখন তাঁর স্থান ও মর্যাদা আমার মাথার উপরে। আমরা যা ভাবি তারো উপরে তিনি।
Political
3
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ ঋভু লেখকঃ শরীফুল হাসান পৃষ্ঠাঃ ২৪০ মলাট মুল্যঃ ২২০/- প্রকাশনাঃ বাতিঘর প্রকাশনী অর্জুন কে ঢাকা পাঠানো হয়েছে এসাইনমেন্ট । সে নিজেও জানে না তার জন্য ঢাকায় কি অপেক্ষা করছে । তবে তাকে সাংবাদিক পরিচয়ে পাঠানো হয়েছে । কিন্তু এসাইমেন্টার গুরুত্ব তার কাছে ধীরে ধীরে জটিল হয়ে উঠেছে । পদে পদে তার বিপদ । কাউকেই বিশ্বাস করা যায় না । তবে এই প্রথম সে একা এবং নিজের সামর্থ্যের উপর তাকে থাকতে হবে । অর্জুন কি পারবে? সম্রাট বিন্দুসারের লক্ষ্য ছিল গুপ্ত বিদ্যার শাস্ত্র যা চানক্য লিখেছিলেন । কিন্তু চানক্য তার বিদ্যা লুকিয়ে রেখেছিল এক গোপন জায়গায় । যার তথ্য শুধু দেয়া হয়েছিল সম্রাট অশোক কে । সম্রাট অশোক হাতিয়ে নেন সে বিদ্যা । যার ফলাফল হয় ভয়াবহ । যদিও তিনি তার ভুল বুঝতে পারেন । কিন্তু তিনি নিজেও জানতে না । তার মৃত্যুর পর এই বিদ্যা আবার মানুষ এর হাতে চলে আসবে । কিন্তু এরপর কি হবে? সাকিব-অয়ন দুজনেই এডভেঞ্চার এর জন্য পাহাড় এ ঘুরতে এসেছে । অয়ন আগেও এডভেঞ্চার এ এসেছে । তবে সাকিব এবার ই প্রথম । কিন্তু তারা দুজন ই জানত না তাদের জীবনের সবচেয়ে বড় এডভেঞ্চার এর সামনে তারা পৌছে গেছে । জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে দাঁড়িয়ে আছে । পারবে কি ফিরতে? ডঃ রামকৃষ্ণ ও ডঃ লুতফর রহমান দুজনেই বিজ্ঞানী । বিজ্ঞান যাদের ধ্যান জ্ঞান । কিন্তু জীবন তাদের কৃতিত্ব দেয়নি । তারা নিজ নিজ জায়গায় অসাধারণ । একদম নতুন কিছু আবিস্কার এর দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে আছেন । কিন্তু কোথায় যেন একটা শুন্যতা । তারা যা করছে সেটা কি মানব জাতির ভবিষ্যৎ এ ভাল না মন্দ হবে । কিন্তু সে পর্যন্ত কি হবে? সাইদ পারভেজ খুব ব্যস্ত । যখন থেকে এই কাজের সাথে যুক্ত তখন থেকে তার নিজের জীবন বলে কিছু নেই । কিন্তু এখন আর পিছন ফিরে আসার সময় নেই । পানির মত টাকা খরচ হচ্ছে কিন্তু কাজের কাজ কিছু ই হচ্ছে না । পিছনে লেগে থাকে পিচ্ছিটাকেও খাসাতে পারেনি । সব নপুংশক এর দল । কিন্তু কাজটা শেষ হবে কবে তার ও ঠিক নেই । প্রজেক্ট খুব দ্রুত শেষ করতে হবে । সফল হবে তো? প্রথমে যদি বলি বইটি আমাকে একটু বোর করেছে প্রথমে । কিন্তু কাহিনী চমৎকার ভাবে এগিয়ে নিয়েছে লেখক । সবচেয়ে ভালো লাগার বিষয় কাহিনী কে পরে যেতে দেননি । গপ্লের গাথুনী চমৎকার হয়েছে । যদিও বিজ্ঞানের যে বিষয়টি তুলেনেছেন তাতে গল্পে আর একটু টুইষ্ট দেয়া যেতো । বিজ্ঞান আর গোয়েন্দাগিরি কে একত্রে আনার চেষ্টা করার ভালো প্রয়াস তবে এখানে বিজ্ঞান এর প্রতি বেশি আলোকপাত করা হয়েছে । যদিও এটা ক্রাইম ফিকিশন কিনা বুঝতে পারছি না । কিন্তু এটা গোয়েন্দা কাহিনী নয় । বিজ্ঞানের এক নিষিদ্ধ জগৎ নিয়ে অসাধারণ এক কাহিনী । যদিও আমি চাই এমন গবেষণা যেন না হয় । সুন্দর পৃথিবী কে সুন্দর ভাবে দেখতে চাই । তবে দারুণ একটা বই ।
Thriller
1
বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে প্রবীণ প্রেসিডেন্ট মালয়েশিয়ার মাহাথির মোহাম্মাদ। আধুনিক মালয়েশিয়া এবং ড. মাহাথির মোহাম্মাদ শব্দটি যেন ওতপ্রোতভাবে জড়িত। মাহাথীর মোহাম্মাদের হাত ধরেই আধুনিক মালয়েশিয়ার পথ চলা। "তুন ড. মাহাথির ও আধুনিক মালয়েশিয়া " বইয়ে লেখক এ কে এম আতিকুর রহমান। তিনি মালয়েশিয়া ও প্রেসিডেন্ট ড. মাহথির মোহাম্মদকে তুলে ধরেছেন বাংলাদেশী পাঠকদের কাছে । সবারই বইটি সংগ্রহে রাখা উচিত।
Political
3
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_আগস্ট_২০১৯ বইয়ের নাম: সাম্ভালা ট্রিলজি(এক রোমাঞ্চকর অভিযাত্রা)(সাম্ভালা ট্রিলজি); লেখক: শরীফুল হাসান; প্রকাশক: বাতিঘর প্রকাশনী; ধরন: থ্রিলার বাংলাদেশের হাজার হাজার গ্রামের মধ্যে অতি সাধারন এক গ্রাম।কাহিনীর শুরু হয় সেখান থেকেই।কিন্তু এই অসাধারন কাহিনী আটকে থাকেনি ঐ সাধারন গ্রামে।আটকে থাকেনি সময়ের বেড়াজালেও।বাংলাদেশের নানা জায়গা থেকে বিশ্বের নানা স্থানে পৌঁছে গেছে কাহিনীর পরিধি,পৌঁছে গেছে বর্তমান থেকে সুদূর অতীতে। কাহিনী সংক্ষেপ: একটি শব্দ-যাকে ঘিরে আবির্ভূত হচ্ছে রহস্য।“সাম্ভালা”।কি এই সাম্ভালার অর্থ?এটা কি কোন জিনিসের নাম?কোন জায়গার নাম?কোন মানুষের নাম?কোন জাতির নাম? নাকি অন্য কিছু!বেশ কিছু মানুষ নেমেছে এই সাম্ভালার খোঁজে।তবে প্রত্যেকেরই উদ্দেশ্য ভিন্ন। সাম্ভালা- অদ্ভুত এক লোক।হাজার বছর ধরে পথ চলছে সে।অন্যদিকে এক শয়তানের সাধক আর তার একনিষ্ঠ বাহিনী।আর সাধারণ ছেলে রাশেদ।নিজ বন্ধুকে হত্যার মিথ্যা অভিযোগে পালিয়ে বেড়াতে হচ্ছে তাকে।পিছনে লেগেছে পুলিশ।শুধু পুলিশ নয় তার বন্ধুকে যারা মেরেছে তারাও তাকে খুঁজছে। সাম্ভালা দ্বিতীয় যাত্রা- হাজার বছরের পরিব্রাজক নেমেছেন সাম্ভালার সন্ধানে।তার পিছে লেগেছে তার চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী।আবার ডঃ কারসন এবং ডঃ আরেফিনও নেমেছেন সাম্ভালার খোঁজে।অন্যদিকে রাশেদের যেন বিপদ পিছু ছাড়ছে না।জড়িয়ে পড়েছে গুপ্তধন উদ্ধারে।বন্ধুকে বাঁচাতে হলে তাকে খুঁজে বের করতেই হবে ঐ গুপ্তধন। সাম্ভালা শেষ যাত্রা- সাম্ভালার খোঁজে তিব্বতে এসে উধাও ডঃ আরেফিন।তাকে খুঁজে বের করতে বন্ধুকে নিয়ে রাশেদও হাজির হল তিব্বতে।কিন্তু সে জানেনা তাদের পিছনে পিছনেই চলেছে বিপদ।পরিব্রাজক লখানিয়া সিংও আছেন সাম্ভালার খোঁজে।কিন্তু তার প্রতিদ্বন্দ্বীও তার থেকে খুব একটা পিছিয়ে নেই। এই সিরিজটি পড়ার সময় বা পড়া শেষে প্রথম যে ভাবনাগুলো মাথায় আসে তার মধ্যে অন্যতম হল এই সিরিজটাকে কোন জেনারে ফেলা যায়।কখনো মনে হবে ফ্যান্টাসি,কখনো এডভেঞ্চার।আসলে এই সিরিজটি ফ্যান্টাসি,অ্যাকশন-অ্যাডভেঞ্চার,থৃলার,গুপ্তধন,সিক্রেট সোসাইটি সব কিছুর সংমিশ্রণের একটি অনন্য উদাহরণ।অনেক সময় এতকিছু একত্রে আনতে গিয়ে অনেক লেখক একটা জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেন।কিন্তু এক্ষেত্রে লেখক বিন্দুমাত্র ভুল করেননি।সব মিলিয়ে একটি চরম উপভোগ্য লেখা উপহার দিয়েছেন। লেখক শরীফুল হাসান এর কয়েকটা গল্প পড়া ছিল শুধু,যেগুলো মূলত থৃলার গল্প সংকলন ১,২ এ ছিল।সেই গল্পগুলো পড়ে ভাল লেগেছিল।আর সাম্ভালা সিরিজের কথা যে কতবার বিভিন্ন মানুষের কাছে শুনেছি,কত প্রশংসা শুনেছি তার ইয়ত্তা নেই।তাই সব মিলিয়ে সাম্ভালা পড়ার জন্য বেশ আগ্রহ ছিল।এখন পড়ার শেষে বলতে পারি বিন্দুমাত্র হতাশ হতে হয়নি। শরীফুল হাসান এর প্রথম মৌলিক উপন্যাস সাম্ভালা।আর প্রথম লেখাতেই তিনি যে জটিল প্লট নিয়ে কাজ করেছেন তা সত্যিই প্রশংসার দাবিদার।আসলে এধরনের বিষয় নিয়ে বাংলাদেশের কোন লেখকই আগে লেখেননি।তিনিই প্রথম লিখেছেন।আর কাহিনীর পরিধিও সুবিশাল।একসাথে অনেকগুলো ঘটনা তিনি বর্ননা করে গিয়েছেন।অনেকগুলো চরিত্রের কথা পাশাপাশি বলেছেন।এক কথায় বলতে তিনি একটি বহুস্তরবিশিষ্ট কাহিনী আমাদের শুনিয়েছেন।ভাবতে অবাক লাগে এতসব ঘটনা,চরিত্র তিনি কিভাবে মাথায় রেখে লিখেছিলেন।আমি মাঝেমাঝেই সময়,কাল,চরিত্রের খেই হারাচ্ছিলাম।কিন্তু তিনি খেই হারাননি।যথেষ্ট দক্ষতার স্বাক্ষর রেখে কাহিনীকে এগিয়ে গিয়েছেন পরিণতির দিকে। সাম্ভালা প্রথম পর্বে লেখকের লেখনী কিছুটা দুর্বল বলা চলে।কিন্তু দ্বিতীয় এবং শেষ যাত্রার ক্ষেত্রে তা বলা যাবেনা।দ্বিতীয় এবং শেষ যাত্রায় এসে লেখকের লেখার ভাষা পেয়েছে সাবলীলতা,প্রাঞ্জলতা,আর কাহিনী পেয়েছে গতি।প্রথম পর্বে এছাড়াও তিনি সময় ব্যাবধানে কিছুটা ভুল করেছেন।যেমন এক জায়গায় দেখা যায় একদিনের মধ্যেই তিনি প্রথমে সকালের ঘটনা লিখে,তারপর রাতের ঘটনা লেখার পর আবার ফিরে গিয়েছেন দিনের ঘটনায়। সিরিজটিতে একই সাথে ঘটে চলেছে অজস্র ঘটনা।কিন্তু কিছু কিছু ক্ষেত্রে ঘটনাগুলোর পিছনে যে যুক্তি,যে ব্যাখ্যা দেওয়া হয়েছে তা যথেষ্ট দুর্বল মনে হয়েছে।কোন কোন ক্ষেত্রে কোন ব্যাখ্যাই দেওয়া হয়নি।যেমন ব্যাখ্যা দেওয়া হয়নি রাশেদ কিভাবে তিন তিনবার তিনতলা থেকে লাফ দিয়েও অক্ষত থাকে।শেষবার অবশ্য একটু পা মচকেছিল!সিরিজের আরেকটি খামতির জায়গা হল কিছু কিছু জায়গায় ডিটেইলিংস এর অভাব। যেমন প্রথম পর্বের এক জায়গায় দেখা যাবে রাশেদ সি.এন.জি তে।তাকে ধাওয়া করা হয়েছে।কিছুক্ষণ পর দেখা যাবে রাশেদ সেখান থেকে রক্ষা পেয়েছে।কিন্তু কিভাবে পেয়েছে সে সম্পর্কে শুধু বলা হয়েছে সি.এন.জি চালকের দক্ষতায় সে বেঁচেছে।আর কিছু বলা হয়নি। যে ব্যাপারটা পুরো সিরিজে সবচেয়ে চোখে লেগেছে তা হল বেশকিছু অসঙ্গতি।আর অবাক করার ব্যাপার হল প্রথম পর্বে এগুলো খুবই কম ছিল,দ্বিতীয় এবং শেষ যাত্রায় প্রচণ্ডভাবে বেড়ে গিয়েছিল।আমি সবগুলো বলতে গেলে হয়ত স্পয়লার হয়ে যাবে।তাই শুধু ৩ টি উদাহরণ দিচ্ছি।দ্বিতীয় যাত্রার ১৭১-১৭২ পৃষ্ঠা পড়ার সময় এক জায়গায় দেখা যাবে রাশেদ মোবাইল বের করে সময় দেখছে।পরের মুহূর্তেই দেখা যাবে সাথে মোবাইল না থাকায় সে কারো সাথে যোগাযোগ করতে পারছে না!!আর বইটির বেশকিছু জায়গায় বিনোদ চরিত্রটিকে আকাশ বলা হয়েছে।আবার শেষ যাত্রায় কিছু জায়গায় একটি চরিত্রের নাম কখনো চরনদাস কখনো রামচরন বলা হয়েছে। এসব মাইনাস পয়েন্ট দেখে মনে হতে পারে বইটা আমার ভাল লাগেনি।কিন্তু আগেই বলেছি বইটা আমার ভাল লেগেছে,সত্যি বলতে কি দুর্দান্ত লেগেছে।আর এই মাইনাস পয়েন্টগুলো সংখ্যায় নগণ্য।বইটির প্লাস পয়েন্টই বেশি।বইটির সবচেয়ে বড় প্লাস পয়েন্ট হল আপনি একবার পড়া শুরু করলে শেষ পর্যন্ত পড়তে বাধ্য।আপনি প্রথম পর্ব শেষ করলে এটি আপনাকে বাধ্য করবে দ্বিতীয় পর্ব হাতে না আসা পর্যন্ত অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করতে।বাধ্য করবে হাতে আসা মাত্র পড়া শুরু করতে। ট্রিলজিটি সব মিলিয়ে ৮০০ পৃষ্ঠার মত।আমি প্রত্যেকটি বইই এক বসায় শেষ করেছি।কারন একবার শুরু করার পর না শেষ করে উঠতে ইচ্ছে করছিল না।লেখক প্রায় পুরো সময়ই রহস্য ধরে রাখতে সক্ষম হয়েছিলেন।কেউ প্রথম পর্ব শেষ করার পর বিন্দুমাত্র ধারনা করতে পারবে না দ্বিতীয় পর্বে কাহিনী কোনদিকে এগোবে।তবে প্রথম দুইটি পর্ব পড়ার পর মনে বেশ কিছু প্রশ্ন জাগে।ট্রিলজিটা শেষ হবার পর অনেক প্রশ্নের যেমন যথাযথ উত্তর মিলেছে,তেমনি পাওয়া যাবে না জানা অনেক প্রশ্নেরই উত্তর।
Thriller
1
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই : তমিস্রা লেখক : জাবেদ রাসিন _____________________________________ " তমিস্রা " এখন আমার পছন্দের বইয়ের মধ্যে একটি ৷ বইটি যখন পড়া শুরু করি, প্রথম প্রথম লেখার স্টাইল মনে হচ্ছিল সাধারণ,খুব একটা জমবেনা কিন্তু যখন রহস্যের শুরু লেখক যেভাবে গল্পটিকে ছড়িয়েছিলেন! যা নিশ্চিতভাবে পাঠকদের শেষ পর্যন্ত ধরে রাখবে ৷ প্রতি মুহুর্তে নতুন চমক আসছে, আসছে নতুন রহস্য, ফেলে যাওয়া রহস্যের সমাধান হচ্ছে নতুন রহস্য সৃষ্টি করে ৷ আসগর মাহতাবের সৎ মা-মেয়ে,তার প্রভু, ছাগল দেবতার চিহ্ন আরো অনেক রহস্য জুড়ে আছে বইটিতে এবং অনেক অজানা তথ্য রয়েছে বইটিতে - জ্বীনদের-জাতি-সম্রাজ্য,ব্ল্যাকম্যাজিক ইত্যাদি ব্যাপারে যা সবাইকে বিস্নিত করবে ৷ এছাড়াও উল্লেখ্য-শুভপুর গ্রামের লৈখিক মাধুর্যে যেই প্রাকৃতিক বর্ননা দেওয়া হয়েছে যা পাঠকদের কল্পনায় নিয়ে যাবে অতি সহজেই ৷ আমি ১ সপ্তাহ যাবত বইটি পড়েছিলাম- আমি যেন সম্পূর্ন ঐ গ্রামের প্রতিটি জায়গার সাথে পরিচিত হয়ে গিয়েছিলাম, গ্রামের- চেয়ারম্যান বাড়ী,থানা,বাইজি বাড়ী, স্কুল মাঠ,জঙ্গল,ব্রিটিশ দালান ইত্যাদি সবই যেন চেনা হয়ে গিয়েছিল ,আর সব শেষে ফিনিশিং যা উওেজনার চরম মাত্রায় নিয়ে যাবে পাঠকদের + শেষেও রহস্যের গন্ধ রাখা যাই হোক বাকি সব যারা পড়েননি তাদের জন্য ৷ আমার পক্ষ থেকে রেটিং - ৪•৫ / ৫ রকমারি বইয়ের লিংক - https://m.facebook.com/rokomari/photos/ a.184264648342150.30268.164315863670362/790138157754793/?type=3&source=5 6&ref=opera_speed_dial
Thriller
1
এই বইয়ের প্রধান চরিত্র লিটু্ নামের এক কিশোর। কিন্তু তাই বলে যে, বইয়ের সবটা কাহিনী লিটুকে নিয়ে তা কিন্তু না। এখানে আছে লিটুর নতুন বন্ধুদের গল্প! এই যেমন- আধ পাগলা রতন, ভাল ছাত্র সাদিব, পরী মাধুরী, মারদাঙ্গা সুমন, মাদার টেনিয়া- তানিয়া! এরা সবাই লিটুর নতুন বন্ধু! নতুন বন্ধু মানে? বন্ধুদের আবার পুরানো-নতুন হয় নাকি? আসলে লিটুরা আগে অন্য আরেক জায়গায় থাকতো। বাবার চাকরির বদলির কারণে তাদের সেখান থেকে এমন একটা জায়গায় যেতে হবে যেখানে চারিপাশে শুধু জঙ্গল, দুচোখ যতদূর যায় শুধু গাছ আর গাছ! অন্য সময় নতুন জায়গায় যাওয়ার কথা শুনলে আনন্দ হলেও এই মুহূর্তে লিটুর কান্না পাচ্ছে। কারণ তার স্কুল, বন্ধু, পরিচিত জায়গা ছেড়ে চলে যেতে হবে। মন খারাপ হলেও কিছু করার নেই। বাবা, মা, বড় আপু আর ছোট ভাই রাজুকে নিয়ে চলে আসতে হলো সেই নতুন জায়গায়। কিন্তু আনন্দের ব্যাপার হলো,নতুন জায়গায় এসে তাকে একদিনও একা থাকতে হয়নি। প্রথমদিনই রতনের সাথে পরিচয় হয়। আর স্কুলে যাওয়ার পর বাকিদের সাথে পরিচয় হয়। কিছুদিন পর লিটুর এক মামা বেড়াতে আসেন লিটুদের বাসায়। সেই মামা একজন বিজ্ঞানী। মামাকে লিটুর ভীষণ পচ্ছন্দ হয়। বিজ্ঞানী বলে কিন্তু মোটেও মামা সারাক্ষণ বিজ্ঞান নিয়ে কথা বলেন না। তিনি লিটুদের দুই ভাইকে সাঁতার শিখিয়ে দেন, রাস্তার পাশে বসে রুটি,ডিম সিদ্ধ খাওয়া শিখান। এমন মামাকে কে না পচ্ছন্দ করে? লিটুর দিন নতুন জায়গায় বেশ ভালোই কাটছিলো। কিন্তু এরই মাঝে দেশে শুরু হয় বন্যা। লিটুর সব বন্ধুরা মিলে রিলিফের কাজে যোগ দেয়। শুরু হয় তাদের অন্যরকম এক গল্প। রিলিফের ত্রাণ দিতে হাওরের এক নাম না জানা গ্রামে যায়। যেতে যেতে পরিচয় হয় এক মুক্তিযোদ্ধা মাঝির সাথে। ফিরে আসার পথে এক ভয়ঙ্কর ডাকাতের কবলে পড়ে। এসকল জমজমাট গল্প নিয়েই লেখা "লিটু বৃত্তান্ত"!
Childrens-Book
2
নিষাদ হুমায়ুন আহমেদ এর মিসির আলী সিরিজ এর তৃতীয় বই। আমরা যে মিসির আলীকে পড়ে মুগ্ধ, আমরা যে মিসির মিসির করি, এই বইতে তিনি সেভাবেই উপস্থিত।তার পর্যবেক্ষন অসম্ভব। তিনি ভাবেন অসম্ভব। মুনিরের রহস্যের ও তিনি এক অসম্ভব সম্ভব সমাধানের খোজে ছিলেন। বলুন তো মনে মনে আমরা কে নাই চাই-যদি এরকম হত। সারা জীবনেই দুর্ঘটনা থাকবেই, কেউ ছেড়ে যাবে, কেউ উড়ে এসে জুড়ে বসবে। তখন মনে মনে বলি ইশ যদি এরকম হত। হয়তো parallel universe এ তা সম্ভব। যে একসাথে ৭ জগত চলছে। তার কোনটিতে হয়তো আমি এই রিভিউ দিচ্ছি, আর কোনটিতে হয়তো আমার কেউ ঘর সংসার করে চলেছে, কেউ হয়তো প্রেম করছে, কেউ হয়তো রোগের সাথে যুদ্ধ করছে। কোনটা ভালো বলা মুশকিল। butterfly effect নামে একটা মুভি আছে। তিনটা না চারটা বের হয়েছিল। ঠিক এরকম কনসেপ্টই বলা চলে। Premature ejaculation নামে একটা ফানি মুভিও আছে ইউটিউবে। টিনেজ মুভি। যাই হোক হুমায়ুন আহমেদ আমাদের অবশ্য বাস্তবতা মেনে নিতে বাধ্য করেছেন। আমাদের তাতে মনঃক্ষুণ্ণ হয়েছে। নিষাদ তাই এক হিসেবে মন খারাপের বই। আগের মত তেমন ভুত ভুত ভাব নেই। একদম খাটি মিসির আলি।
Fiction
0
রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা জুলাই রিভিউ ৪১ বুক রিভিউ : রজনী লেখক : হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনী : অন্যপ্রকাশ রেটিং : ৪/৫ ধরণ : সমকালীন উপন্যাস রকমারি মূল্য : ১৩২ টাকা বীরু, মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে।তিন ভাইবোনের মধ্যে দ্বিতীয়। বীরুর বাবারা প্রচুর বড়লোক থাকলেও বাবার খামখেয়ালির কারণে তিনি সব হারান।বীরুর বড় বোন অনুর দেয়া মাসিক কিছু টাকায় চলে যায় তাদের দিন।তবে তা পারের মাসেই ফেরত দিতে হয়। বীরুর ছোট বোন পারুল।ছোট ভাইবোনদের যে বন্ধুত্ব থাকার কথা,তা তাদের মাঝে নেই।বরং দুজনকে দুজনের চিরশত্রু মনে করে। বীরুর ভালোবাসার বালিকাটি হল এশা। এই মেয়েটি কখনো কাঠফাটা রোদে হাঁটবে,আবার কখনো চুপ করে বসে থাকবে। এই অদ্ভুত মেয়েটিকে মাঝে মাঝে বীরুও বুঝে না।একদিন বীরু এশার একটি বড় সত্যি জানতে পারে।কী ছিল সেই সত্যি? ভালোবাসা মানুষকে নানা রঙ উপলব্ধি করতে শেখায়।বীরু কি পেরেছিল তা উপলব্ধি করতে?অনুভব করতে? রকমারি লিংক:https://www.rokomari.com/book/955
Fiction
0
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ মানুষ কেন ভালোবাসে? কেন তীব্র টান সত্বেও কোনো সম্পর্কের ভিত নড়ে যায়? আকাশ ভরা ভালোবাসা পেয়েও মানুষ কেন সেই সম্পর্ক থেকে পিছু ফিরে? মনোপাখি জীবনের গল্প, সম্পর্কের গল্প। জীবনমুখী এই উপন্যাসে অনেকগুলো চরিত্র, সবাই আপন গতিতে এগিয়েছে। রুমঝুম শফিক আযাদের অষ্টাদশী কন্যা। মিষ্টি এই মেয়েটি কখনো তার বাবাকে মায়ের মতই শাসন করে, কখনো আবার মার শাড়ি পরে বউ সেজে ঘুরে বেড়ায়। মাকড়সা দেখে ভয় পেয়ে যায় যে মেয়ে, তার মনের মধ্যে বাস করে অপ্রতিরোধ্য আগ্নেয়গিরির আগুন। রুপুর জীবনটা অনেক কষ্টের হবে - ছোট্ট থাকতেই তাকে বলেছিল তার ছেলেবেলার একমাত্র বন্ধু, মামাতো বোন অন্তরা। কম বয়সে বাবাকে হারিয়ে নানাবাড়িতে বড় হয় রুপক। নানার জমিদার বাড়িতে আশ্রিতের মত থাকতে গিয়ে আত্মবিশ্বাসটাই হারিয়ে গেছে মন থেকে। বন্ধুহীন, কারো চোখে চোখ রেখে কথা বলতে পারে না। নিজের সুন্দর চেহারাটাকেও ঘৃণা করে প্রচন্ড। কোন সম্পর্কে বাঁধা পড়তে ভয় পায় রুপু, ভয় পায় তার ভয়ংকর অতীতের সাথে দ্বিতীয় কাউকে জড়াতে। তবু রুমঝুমের পায়ের নুপুরটা পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে রুপক। চিত্র পরিচালক নিয়াজ। পর পর তিনটি চলচ্চিত্র বানিয়েছে, দেশে বিদেশে পুরস্কার পেলেও হলে তেমন চলে না। পরাজিত পরিচালকের সাথে আর কাজ করতেও চায় না কেউ। একজন প্রযোজক এর জন্য ঘুরে-ফিরছে নিয়াজ। ব্যর্থতার ছায়া পড়ছে দাম্পত্য জীবনে। অহমবোধ রিক্ত করে দিচ্ছে ভালোবাসাকে।  ভালোবাসি - এই ছোট্ট কথাটা রেহেনাকে কি করে যে মুখ ফুটে বলে নিয়াজ! গল্পে প্রয়োজনে লেখক এনেছেন আরো চরিত্র। প্রতিটি চরিত্র এতো বাস্তব, মনে হয় আশেপাশেই আছে। সাধারণ গল্পকে বলার ঢঙে অসাধারণ করে তোলার দারুণ মুন্সিয়ানা ছিল লেখকের লেখনীতে। রাফিউজ্জামান সিফাতের লেখা আগে পড়া হয় নি। এবার পড়ে মুগ্ধ হলাম। বইয়ের প্রচ্ছদটাও ভালো লাগার মত। এবারের বইমেলায় এখনো পর্যন্ত পড়া বইয়ের মধ্যে, নির্দ্বিধায় নাম বলতে বললে এই বইটির কথা বলবো। বই: মনোপাখি লেখক: রাফিউজ্জামান সিফাত প্রকাশক: আদী প্রকাশন প্রকাশকাল : বইমেলা ২০১৯ মূল্য: ২৮০ টাকা
Fiction
0
এমনিতেই কিশোর উপন্যাস রচনায় মুহম্মদ জাফর ইকবাল সিদ্ধহস্ত আর বিষয়বস্তু যদি হয় মুক্তিযুদ্ধ তাহলে সেটা ঝলসে উঠে আপন মহিমায়। কাহিনীর শুরু স্বাধীনতা পূর্বক বাংলাদেশের কাঁকনডুবি গ্রামে।নানির কাছে বেড়ে ওঠা কিশোর রঞ্জুর জবানিতে এর গল্প । আর আছে বন্ধু মামুন,লতিফা বুবু, চা’র দোকানি বলাই কাকা,গ্রাম্য পাগল হাবিবুর রহমান, গ্রামের সবচেয়ে ফালতু মানুষ মতি। কাঁকনডুবির নিস্তরঙ্গ জীবনে প্রথম ঢেউ তোলে রঞ্জুদের স্কুলের বদলি শিক্ষক মাসুদ স্যার। রঞ্জুদের কিশোর মনে স্বাধীনতার বীজও বপন করেন তিনি। স্কুলে প্রথম বারের মত পালিত হয় একুশে ফেব্রুয়ারী, বাঁশ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারে। মাসুদ স্যার এর কথোপকথনে উঠে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট। আর বলাই কাকার চা’র দোকানের রেডিও টা বর্ণনা করে গেছে ৭১ এর দিনলিপি। ৭ই মার্চ, ২৫শে মার্চ এর কালরাত্রি, বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তার, জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সব খবরই আসে কাঁকনডুবি গ্রামে আর আসে বানের পানির মত শহর ছেড়ে পালিয়ে আসা মানুষ। আসে ডোরা নামের কিশোরী যার ইঞ্জিনিয়ার বাবাকে পাকিস্তানি বাহিনি মেরে ফেলে রেখে দিয়েছিল, লাশ দাফন করতে দেয় নি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে কাঁকনডুবি গ্রাম বদলে যায়। বদলে যায় এর মানুষেরাও। মাসুদ ভাই যোগ দেন মুক্তি বাহিনিতে ,ফালতু মতি হয় মইত্যা রাজাকার, গঠন করে রাজাকার বাহিনি, রঞ্জুদের স্কুল টা পরিনত হয় পাকিস্তানি বাহিনির টর্চার কাম্পে। এক সকালে মুক্তিবাহিনির সাথে যোগাযোগ আছে এই সন্দেহে রঞ্জুকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পাকিস্তানি মিলিটারি। চলে অকথ্য নির্যাতন। রঞ্জুর জীবন সংশয় বুঝতে পেরে তাকে উদ্ধার করে মুক্তিবাহিনির ক্যাম্পে নিয়ে আসে মাসুদ ভাই সাথে খোকনের ছদ্মবেশে ডোরা। শুরু হয় তাদের গেরিলা জীবন। ঘটনাক্রমে রঞ্জু ও ডোরার অসম সাহসিকতায় পাকিস্তানি মিলিটারির কবল থেকে উদ্ধার হয় রঞ্জুদের স্কুল। উড়ান হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর কাঁকনডুবি যেন বাংলার ৬৪ হাজার গ্রামের প্রতিচ্ছবি। রঞ্জু, ডোরারা মনে করিয়ে দেয় মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশ নেয়া কিশোর কিশোরীদের অবদান যারা অনেকেই স্বাধীনতার সূর্য দেখে যেতে পারেনি। আছে পাইকার ভাই নামের মজার ও মহান মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের কথা। আছে মা নামে এক কিশোরী বধু যাকে পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে ছিল বলে তাঁর পরিবার ঘরে তোলেনি। আছে স্বাধীনতা পূর্বক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পাকিস্তানি মিলিটারির অত্যাচার, মা-বোনদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে আটকে রাখার কথা সবই এসেছে কিশোর উপযোগী ভাষায়। ২৫৬ পৃষ্ঠার এই বইতে সমগ্র মুক্তিযুদ্ধ কে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন কাঁকনডুবি গ্রামের ক্ষুদ্র ক্যানভাসে। সুখপাঠ্য এবং এক নিঃশ্বাসে শেষ করার মতো একটি বই যা বাংলাদেশের প্রতিটি কিশোর কিশোরীদের অবশ্য পাঠ্য হওয়া উচিত।
Childrens-Book
2
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা নাম: ক্রোমিয়াম অরণ্য লেখক: মুহম্মদ জাফর ইকবাল মুল্য: 140 টাকা ধরন: বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী প্রকাশনা: সময় প্রকাশন ক্রোমিয়াম অরণ্য: ক্রোমিয়াম একটি ধাতু,( ভৌত অবস্থা থেকে হাইড্রোজেনের কাছাকাছি যেমন হিলিয়াম, একইভাবে লোহার কাছাকাছি ধাতু এই ক্রোমিয়াম) নাম থেকে বুঝাই যাচ্ছে এমন এক সময়ের কথা বলা হচ্ছে, যেখানে ঘাসের অরণ্য নয়, থাকে ধাতুর ছড়াছড়ি। যে অরণ্য হয়ে দাড়ায় বিপর্যয়ের সাক্ষী। এবং একে কেন্দ্র করেই এই উপন্যাস। রিভিউ: এক ভয়াবহ বিপর্যয়ে ধ্বংস হয়ে গেছে পৃথিবী। সেই পৃথিবীতে বেচে রয়েছে অল্প কিছু মানুষ। আর তাদের রক্ষার জন্য রয়েছে তথ্যভাণ্ডার সমৃদ্ধ পরিব্যপ্ত অপারেটিং সিস্টেম নিয়ে সকল কম্পিউটারের যোগসূত্র গ্রুস্টান। সে নিজেকে ঈশ্বরের মত মনে করে। কিন্তু একদিন উপন্যাসের মূল নায়ক কুশান গ্রুস্টানকে কম্পিউটার প্রোগ্রাম বলায় গ্রুস্টান ক্ষিপ্ত হয়ে যায়। তার মনে হয় মানুষের হৃদয়ে নিজেকে অপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্ষমতাশালী বানানোর ক্ষেত্রে এটা বড় বাধা। তাই সে কুশানকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। কিন্তু কুশান সেখান থেকে পালিয়ে যায়, এরপর ফেরারী হয়ে সে ঘুরতে থাকে। কুশান কী পারবে নিজেকে রক্ষা করতে? এক বিশাল পরিব্যাপ্ত অপারেটিং সিস্টেমের বিরুদ্ধে সে কিভাবেই বা লড়াই করবে? জানার জন্য এ উপন্যাস পাঠ্য। পাঠ প্রতিক্রিয়া: যন্ত্র এবং মানুষের দ্বন্দ্ব সায়েন্স ফিকশন লেখকদের কাছে প্রিয় সাবজেক্ট হলেও অন্যান্য সায়েন্স ফিকশন থেকে এর কিছুটা পার্থক্য আছে। বিশেষ করে মানুষের সাথে যন্ত্রের যুদ্ধের যে কৌশল টা তা অন্য সায়েন্স ফিকশন থেকে আলাদা, মৌলিক। যন্ত্রের মানুষের প্রতি ভালোবাসা, এবং একই সাথে ঘৃণা, সমান্তরালভাবে ফুটে উঠেছে, যা এ সায়েন্স ফিকশন কে দিয়েছে আলাদা মাত্রা। আমার চোখে এর রেটিং 4/5
Science-Fiction
4
প্রিয়, লতিফুল ইসলাম শিবলী ভাইয়ের লিখা এই 'দারবিশ' উপন্যাস - রূপ-রূপালী,মেধা-বুদ্ধি, ভালোবাসা-মমতার এক অসাধারন সংমিশ্রনে লিখা। প্রিয় গীতিকবির এই 'দারবিশ' ভাললাগার মাঝে ছুয়ে যায় আমার হৃদয়কে এবং উপন্যাসের গভীরতার গভীর থেকে গভীরে নিয়েছিল আমাকে। সবমিলিয়ে একটা কথাই বলতে পারি, ‘দারবিশ' একটি সত্যিকারের মাস্টারপিস। লেখকের লেখকজীবনের সেরা লেখা তো বটেই, ভবিষ্যতেও তার যোগ্যতার মাপকাঠি হয়ে থাকবে দারবিশ উপন্যাস। এবং Latiful Islam Shibli ভাইকে আমি মুলত গান লিখার জাদুকর হিসেবে চিনি খুব কাছ থেকে। প্রিয় জেমস ও আইয়ুব বাচ্চু ভাইও গেয়েছেন শিবলী ভাইয়ের লিখা অনেক গান, তার মধ্যে আমার পছন্দের উল্লেখযোগ্য কিছু গানঃ 'জেল থেকে বলছি,নাটোর ষ্টেশন,মান্নান মিয়ার তিতাস মলম,কতটা কাঙ্গাল আমি,জোসি প্রেম,নীল আকাশ,পেশাদার খুনি,প্রানের শহর,জঙ্গলে ভালোবাসা,পলাশীর প্রান্তর,প্রিয় আকাশী,আমি কষ্ট পেতে ভালবাসি, কেউ সুখি নয়, হাসতে দেখো গাইতে দেখো,তুমি আমার প্রথম সকাল' শিবলী ভাইয়ের প্রতি শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় সিক্ত আমি। -আদমীন হোসেন বাঁধন বিবিএ, নর্দান বিশ্ববিদ্যালয়,বাংলাদেশ
Fiction
0
রাজুর মনটা অনেক খারাপ। বড়রা কেন না বুঝে বাচ্চাদের মত ঝগড়া করে। তারা কি জানে না বাচ্চারা এই ঝগড়া দেখলে কতটা কস্ট পায়। তুচ্ছ কারনে আজ রাজুর বাবা মা ঝগড়া করে বাসা থেকে বেরিয়ে গেল। সাগরের মনে হয় সুবিধাই হয়েছে। কি সুন্দর ফ্রিজ খুলে চকলেট বের করে খাচ্ছে। ওর মনে কোন চিন্তাই নেই। বাসার এই মনখারাপ সময়টা হুট করেই কেটে গেল আজগর মামা আসার পর। হৈ-হুল্লোড় করে সময়টা মুহূর্তেই ভাল হয়ে গেছে। আরো মজা হলো যখন মামা বললেন রাজু আর সাগরকে মামার বাসায় নিয়ে যাবেন বেড়াতে। প্রথমে ট্রেন, তারপর পায়ে হেটে আবার বাস, তারপর পাহাড়ি রাস্তায় স্কুটারে খুব মজার একটা ভ্রমন শেষ করে অবশেষে ওরা মামার বাসায় এসে পৌছাল। কি সুন্দর ছায়াঢাকা, শান্ত সুন্দর এলাকায় থাকেন মামা। একে একে পাহাড়ি ঝর্ণা, জিন্দা আগুন সব দেখাবেন বলেছেন মামা। কিন্তু ঝর্ণা দেখে ফেরার পরেই দেখা গেল গ্রামের কতগুলো মানুষ এসেছে মামার কাছে। খুব জরুরী একটা কাজে এখনই মামার যেতে হবে। এদিকে রাজু আর সাগরকে ফেলে মামা কি করে যান? এদিকে তার কাজের লোক চান মিয়াও এখনও এসে পৌছাল না। তাই রাজু মামাকে অভয় দিয়ে বললো অল্প একটু সময়ের ব্যাপার, মামা যাতে চলে যান আর চান মিয়া এসে পড়লে তো আর কোন সমস্যা নেই।।। এদিকে একা একা রাজু আর সাগরের সময় তো আর কাটে না। তাই তারা দুজনে মিলেই ঘুরতে বের হলো। তখন তাদের দেখা হলো আগুনালির সাথে। আসল নাম তৈয়ব আলি কিন্তু আগুন নিয়ে তার খেলার জন্য সবাই তার নাম দিয়েছে আগুনালি। আগুনালি চ্যালেঞ্জ করে রাজুকে যে সে ভূত আছে সেটা প্রমাণ করে দেখাবে। এই এলাকায় নাহার মঞ্জিল নামে একটা বড় বাড়ি ছিল। সেই বাড়িতে থাকত এলাকার বড় রাজাকার কাশেম আলি চৌধুরী। তখন সেই বাড়িতে মিলিটারি ঘাটি ছিল। অনেক মানুষকে ধরে নিয়ে যেত সেখানে, অত্যাচার করে মারত। এমনকি অনেক মেয়েদেরকেও ধরে নিয়ে যেত সেখানে। রাত গভীর হলে সেখানে আজো মানুষের চিৎকার শোনা যায়, কথা শোনা যায়, আর ছায়া ছায়া কি যেন দেখা যায়। দেখাতে নিয়েও যায় রাজুকে। রাজু আসলে কি দেখেছিল? ভূত??? আসলেই কি ভূত বলে কিছু আছে??? নাকি এর মাঝে অন্য কিছু ঘটনা আছে??? আমার কথা : রাজু ও আগুনালির ভূত প্রথম পড়েছিলাম সম্ভবতঃ যখন আমি ৭ম বা ৮ম শ্রেণীতে পড়ি। মুহম্মদ জাফর ইকবালের আর পাঁচটা কিশোর উপন্যাসের মতই আকর্ষণীয় আর ঘটনাবহুল। রাজু, সাগর আর তাদের বাবা মা বরাবরের মতোই দারুণ। মাঝেমাঝেই আমার আফসোস হতো কেন আমার পরিবারটা এমন না। কেন এত ভালবাসাময় আর ঝগড়ুটে পরিবার আমার নাই। আর মামার তো জবাবই নাই। তবে এত ছোট দুটা বাচ্চাকে রেখে যত জরুরি কাজ হোক না কেন চলে যাওয়াটা ঠিক ভাল লাগে নাই। তবে মামা চলে না গেলে এমন একটা অভিযান তো আর হত না, তাই এটাই বাদ দিলাম। আগুনালি তো ফাটাফাটি টাইপ একটা চরিত্র। এত ছোট একটা ছেলে যে কিনা আগুনকে এত ভালবাসে যে তার নামটাই হয়ে গেল আগুনালি কি মজার না ব্যাপারটা??? তবে সবচেয়ে বেশি বিরক্তিকর যে ব্যাপারটা সেটা হল দাড়িওলা হুজুরটাইপ ব্যক্তি মানেই তারা রাজাকার আর খারাপ লোক এটা সবজায়গায় মানা যায় না। আর ধর্মীয় বিধিনিষেধ মানা মানেই সমাজে পিছিয়ে যাওয়া এটা উনাকে কে শিখালো এটা আমার মাথায় ঢোকে না। ঘরের মাঝে বন্দি করে রাখা, লেখাপড়া করতে না দেয়া, অল্প বয়সে হুজুর কারো সাথে বিয়ে দেয়া, এই ব্যাপারগুলো আসবেই উনার লেখায় এ কেমন কথা? এ থেকে কি উনি বেরিয়ে আসতে পারেন না??? এইসব বাদ দিলে মোটের উপর খুব ভাল একটা অ্যাডভেঞ্চার ছিল পুরোটা। আর মোটরবাইক চালানো আর বন্দুক ঘাড়ে নিয়ে বের হওয়াটাও খুবই মজার ছিল। যদিওবা কিশোর অ্যাডভেঞ্চার হিসেবে একটু বেশি বেশিই হয়ে গিয়েছিল। ব্যাপার না।।। মাঝে মাঝে একটু আধটু বেশি না হলে জীবন চলবে কি করে??? হ্যাপি রিডিং।।।
Childrens-Book
2
মাত্র ৯৮ পাতায় অসাধারণ মজার একটা কাহিনী তুলে ধরেছেন জাফর ইকবাল স্যার। শুধু বাচ্চারাই নয়, বড়রাও সমানভাবে উপভোগ করতে পারবেন মেকুর আজব আজব কান্ড-কারখানা। এ এমনই এক বই যা পাঠকের মন নিমিষেই এক অদ্ভুত ভালো লাগায় ভরিয়ে দেবে। এই উপন্যাসে বলা হয়েছে মেকু নামের একটা বাচ্চার কথা, জন্মলগ্ন থেকেই যার রিফ্লেক্স খুব ভাল। জন্মানোর পর থেকেই সে সবার কথা শুনে বুঝতে পারছে, নিজের মত করে ভাবতে পারছে আবার চেষ্টা করলে কথাও বলতে পারছে। অবশ্য তার মুখে কথা শুনলে সবার পিলে চমকে যায়। তাই সে না পারতে কথা বলে না। ছোট বাচ্চা তো কি হয়েছে, মেকুর অনেক রাগ। তার সম্পর্কে কেউ বাজে মন্তব্য করলে বা তার সাথে খারাপ আচরণ করলে সেই ব্যক্তিকে কঠোর শাস্তি দেয় মেকু। সে যে খুব স্পেশাল একটা বাচ্চা তা শুধু তার মা-ই বুঝছেন। আর কেউ পাত্তা দিচ্ছে না। ঘটনাচক্রে এবং ভুলক্রমে তিন সদস্যের এক অপহরণকারী দল কিডন্যাপ করে বসল মেকুকে। মেকু তো খুব বুদ্ধিমান। তাই অপহরণকারীদের সে নানাভাবে হেনস্তা করতে । পুলিশের সহায়তায় মেকুকে উদ্ধার অভিযানে এলেন তারা। তাহলে মেকুর মত একটা বাচ্চা ছেলে কি নিজেই নিজের বিচক্ষণতার মাধ্যমে বিপদ থেকে রক্ষা পাবে? তা জানতে হলে পড়তে হবে 'মেকু কাহিনী'। জন্মাবার পর থেকেই মেকু যেসব জটিল বিষয় নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করে আর সেগুলোকে লেখক যেরকম স্বাভাবিক ভাষায় প্রকাশ করেছেন তা পড়লে চমকে যেতে হয়। আর প্রতি লাইনে লাইনে মজা তো আছেই। বইটি পাঠকালে শুরু থেকে শেষ অব্দি পাঠকের মুখে হাসি লেগে থাকতে বাধ্য। মেকু যেভাবে অপহরণকারীদের জব্দ করছিল তার বর্ণনা পড়তে পড়তে নিঃসন্দেহে মনে পড়ে যাবে 'বেবিস ডে আউট' এর কথা। বেবিস ডে আউটের বাচ্চাটা যেমন বুদ্ধিমান আর স্মার্ট ছিল, আমাদের মেকুও কিন্তু কোন অংশে তার থেকে কম না! যাইহোক, মাত্র ৯৮ পাতায় অসাধারণ মজার একটা কাহিনী তুলে ধরেছেন জাফর ইকবাল স্যার। শুধু বাচ্চারাই নয়, বড়রাও সমানভাবে উপভোগ করতে পারবেন মেকুর আজব আজব কান্ড-কারখানা। এ এমনই এক বই যা পাঠকের মন নিমিষেই এক অদ্ভুত ভালো লাগায় ভরিয়ে দেবে।
Childrens-Book
2
মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর লেখা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী কেপলার টুটুবি। ভবিষ্যতে মানুষের বেঁচে থাকার গল্প।মানুষরা জৈব রোবট তৈরি করে যার নাম 'রবোমানব'। রবোমানবেরা পৃথিবীকে দখল করে নেবে ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে মানুষের বেঁচে থাকতে হবে। তাই পৃথিবীর কিছু মানুশকে অন্ন এক পৃথিবীতে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। মোট সাতজন মানব মানবী।সাতজনের ছোট দল। ইহিতা,সুহা, টুরান, টর, নীহা, ক্লদ ,নুট।নেতৃত্বগুণে আর সাহসিকতায় তাদের দলপতি ইহিতা। কিন্তু কিন্তু ওদের সাথে ছদ্ম-পরিচয়ে উঠে পড়েছে দুটি রবোমানবও। ছয়শত মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে কেপলার টুটুবি গ্রহে নতুন সভ্যতা গড়ে তুলবে তারা । সমস্যা হওয়ার কারনে তারা নেমে পড়ে তেজস্ক্রিয় প্রাণীর গ্রহ মঙ্গল গ্রহে। যে গ্রহে রয়েছে ভয়ঙ্কর তেজস্ক্রিয় প্রানী। যাদের চোখেও দেখা যায়না। পৃথিবীর কোনো প্রাণীর মতো নয়। মনে হয় মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দিয়ে একটি অতিকায় কুৎসিত ক্লেদাক্ত কীট তৈরি করা হয়েছে। সেই সাথে ছদ্দবেশী রবোমানব রা চায় সত্যকারের মানুষদের ধ্বংস করতে। তাই রবমানব দুটিকে তাদের শনাক্ত ও করতে হবে একি সাথে। টুরান, ইহিতাদের ভয় এর সাথে সাথে আশংকাগুলোও ঢুকে যেতে থাকে। পারবেতো ওরা বেঁচে থাকতে? কিন্তু বিজ্ঞান একাডেমীর চেয়ারম্যান সব কিছু শেষ জানতেন। কিন্তু এক বিশেষ উদ্দেশ্যে তিনি সব পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন । এবং শেষ মুহুর্তে করা কাজগুলোতে প্রমানিত হয় মানব সভ্যতাকে তিনি বাঁচাতে চেয়েছেন। রক্ষা করতে চেয়েছেন। চেয়েছেন নতুন পৃথিবী শুরু হক। মানুশের মধ্যে মানবতা আবার জেগে উঠুক। একতা জেগে উঠুক। যে মানবতার উপরে কিছুই নেই। সর্বকালে যে কারণটার জন্য যেমন মানুষ বেঁচে থাকতে চেয়েছে, সেই একই কারণে মানুষ প্রাণ দিয়ে দিতেও দ্বিধা বোধ করে না।সেটা হল ভালোবাসা... মানুষের জন্য মানুষের
Science-Fiction
4
প্রথমে ধন্যবাদ জানাই সুলেখক শওকত হোসেনকে। দীর্ঘদিন ধরেই তিনি বাংলাদেশের পাঠককূলকে মোহিত করে রেখেছেন তাঁর লেখনী দিয়ে। তাঁর মাধ্যমে আমরা ইংরেজি ভাষার উপন্যাস ছাড়াও অন্য ভাষার সাহিত্যের সাথে পরিচিত হতে পারছি। ইতিমধ্যেই তিনি নরওয়ে, সুইডেন প্রভৃতি দেশের লেখকদের বই অনুবাদ করেছেন। তাঁর এই কাজে সহযোগী হিসাবে থাকার জন্য প্রকাশনা প্রতিষ্ঠান কালো হরফকে ধন্যবাদ জানাই। এবার আসি এই উপন্যাসের কথায়। বইয়ের প্রচ্ছদ সুন্দর, বাঁধাই ভালো। সম্পাদনার কাজ ভালো হয়েছে। বইটা পড়ার সময় বার বার মনে হয়েছে শওকত হোসেন শুধু ভালো নয় খুবই ভালো একজন লেখক ও অনুবাদক। কাহিণীর শুরুটা একটু ধীর মনে হলেও পরবর্তীতে তা যথেষ্ট গতিশীল ছিল। এত বড় একটা উপন্যাস কিন্তু কোথাও কাহিণী ঝুলে যায়নি বা ঘটনার বর্ণনা বাহুল্য মনে হয়নি। এটা কিন্তু ধুন্ধুমার মারামারির কোন উপন্যাস নয়। এই উপন্যাস মনস্তাত্তিক রোমাঞ্চকর উপন্যাস। এখানে অ্যাকশন এসেছে প্রয়োজনে। পুলিশের গোয়েন্দা ইউনা দক্ষ গোয়েন্দার মতো মাথার ব্যবহার করেছেন। বুদ্ধিতে তার জুড়ি মেলা ভার, সাথে আছে দৃঢ় সংকল্প। উপন্যাসের শুরু যে গল্প দিয়ে শেষটা কিন্তু ভিন্ন একটা গল্পের প্রেক্ষাপটে। যেখানে আপাদমস্তক জড়িয়ে আছেন ডঃ এরিখ। ডঃ এর মানসিক, ব্যক্তিগত জীবনের টানা পোড়েনে হাজির হয় তাঁর অতীত। সেই অতীত থেকে বর্তমানের সংকট। আমার অনুরোধ বইটা পড়বেন। দুর্দান্ত উপন্যাস।
Thriller
1
আমরা হিমুকে খুব ভাল করে চিনি, জানি হিমু কেমন,তার চাল চলন কেমন আর সবচেয়ে বড় কথা আমরা জানি হিমু বিয়ে করেছে কিনা। কিন্তু আমরা কি এটা জানি মিসির আলী বিয়ে করেছেন কিনা? যদি বিয়ে করে থাকেন তাহলে কাকে বিয়ে করেছেন সে কেমন এসব প্রশ্নের উওর বইটি পড়লে জানতে যেমন পারবেন সেইসঙ্গে জানতে পারবেন তিন্নি নামের একটি ছোট্ট সুন্দরী মেয়ের কথা। মেয়েটির অদ্ভুত এক রোগ আছে। তবে ব্যাক্তিগত ভাবে আমি সেটাকে রোগ বলবোনা বরং তিন্নির সেই রোগ যদি আমার হতো তাহলে সেটা হত আমার জীবনে অনেক বড় পাওয়া। অনেক ধনী পরিবারের মেয়ে তিন্নি, জন্মের পরপরই মা মারা যায়। জন্মের পর থেকে তিন্নি কথা বলতো না। এমনাটা নয় যে তিন্নি কালা কিংবা বোবা। সব ঠিক থাকার পরও তিন্নি কেন কথা বলে না এটা জানেন না তার বাবা। তবে ব্যাপারটায় যখন তিনি অভস্ত হতে লাগলেন ঠিক তখন থেকে তিন্নি কথা বলতে শুরু করলো। সেইসঙ্গে পৃথিবীর সব প্রশ্নের উওর তিন্নি জানে। অন্ধকারে স্পষ্ট দেখতে পায় তিন্নি। অনায়াসে অন্যের মাথার ভেতর ঢুকে মনের কথা যেমন বের করে আনতে পারে তেমনি অন্যের মাথায় যন্ত্রণা সৃষ্টি করতে পারে। এর কম আরো অনেক ক্ষমতা আছে তিন্নির। হয়তো সেইসব ক্ষমতার কারনে তিন্নি চায় বর্তমান সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে। নয়তো একদিন সে গাছে রুপান্তরিত হবে। গাছরাই তিন্নিকে সেকথা বলছে, তিন্নি গাছের কথাও বুঝতে পারে। তিন্নির এতসব সমস্যা কি মেটাতে পারবে মিসির আলী? কিন্তু মিসির আলীকে এই সমস্যার সমাধান যে করতেই হবে। একটা বাচ্চা মেয়ের কষ্ট তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তাই শুরু করে দিলেন পড়াশোনা, যোগাযোগ করতে লাগলেন পৃথিবীর বিখ্যাত সব মানুষদের সাথে।
Fiction
0
one of the best novels I have ever read.
Fiction
0
১৯৪৭ থেকে ২০০৭—দীর্ঘ ছয় দশকে বাংলাদেশ নামের ভূখণ্ডটির আর্থসামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনে বহু আলোড়ন সৃষ্টিকারী ঘটনা ঘটেছে। এ সময়ে দুই বার পতাকা বদল হয়েছে। ১৯৪৭ সালে বিদেশি শাসকেরা চলে যাওয়ার সময় এ দেশের মানুষ পাকিস্তানের মধ্যে যে মুক্তি খুঁজেছিল, তা তিরোহিত হতে সময় লাগেনি। ১৯৪৮ সালের মার্চে ঢাকায় এসে পাকিস্তানের প্রতিষ্ঠাতা মুহম্মদ আলী জিন্নাহ উর্দুকে দেশের একমাত্র রাষ্ট্রভাষা ঘোষণার মধ্য দিয়ে বাঙালির সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অধিকার অস্বীকার করলেন। এরই ধারাবাহিকতায় ১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন, পরবর্তীকালে শিক্ষা আন্দোলন, গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন, ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুথানের মাধ্যমেই পাকিস্তানি শাসকদের চরম জবাব দেয় বাঙালি জনগোষ্ঠী। ১৯৭০ সালের নির্বাচনে বাঙালি নেতৃত্ব নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেলেও ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে গড়িমসি করে সামরিক জান্তা। যার পরিণতি ২৫ মার্চের গণহত্যা। এরপর দীর্ঘ নয় মাসের সশস্ত্র সংগ্রামের মধ্য দিয়ে এ দেশের মানুষ স্বাধীনতা লাভ করে, যা কেবল একটি পতাকা ও ভৌগোলিক অখণ্ডতায় সীমাবদ্ধ নয়। আমাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা ছিল সব ধরনের অন্যায়-অবিচার, শোষণ ও বঞ্চনা থেকে মুক্তি। গণতন্ত্র ও সাম্যই ছিল স্বাধীনতার মূলমন্ত্র। কিন্তু আমরা কি সেই স্বাধীনতা পেয়েছি? পেলে কতটুকু পেয়েছি, না পেলে কেন পাইনি, কাদের কারণে পাইনি—সেসব আজ ইতিহাসের বিষয়। ছয় দশকে সাতটি প্রতিপাদ্য বিষয় বাছাই করা হয়েছে এই গ্রন্থে। এর মধ্যে ‘টারবুলেন্ট ফার্স্ট ইয়ারস, ১৯৪৭-৫২’: অধ্যাপক-শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান, ‘কোয়েস্ট ফর রিজিওনাল অটোনমি’: দিলারা চৌধুরী, ‘আন্ডার মিলিটারি রুল, ১৯৫৪-৭০’: আবুল মাল আবদুল মুহিত, ‘দ্য ওয়ার অব লিবারেশন ১৯৭১’: মোহাম্মদ জমির, ‘দি মুজিব এরা: ১৯৭২-৭৫’: মোহাম্মদ ফরাসউদ্দিন, ‘আন্ডার জিয়া অ্যান্ড এরশাদ’: মেঘনা গুহঠাকুরতা, ‘টু ওয়ার্ল্ড ডেমোক্রেটিক পলিসি: ১৯৯১-২০০৬’: আতাউস সামাদ। একটি বইয়ের কয়েকটি অধ্যায়ে বাঙালির রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রামের বিশাল ক্যানভাস ধারণা সহজ নয়। আর এ ধরনের লেখায় বিশ্লেষণের সুযোগও কম। তার পরও আনিসুজ্জামানের ভাষাভঙ্গিটি বেশ সরস, এবং ধারাবর্ণনার মধ্যেও আছে নিখুত বিশ্লেষণ। অন্যান্য লেখকও অনেক পরিশ্রম করে তথ্য-উপাত্তের সন্নিবেশ ঘটিয়েছেন, যাতে পাঠক চোখ বোলালে সব ঘটনার সারাংশ জানতে পারেন। তবে প্রামাণ্য গ্রন্থ হিসেবে এর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো আলোকচিত্র। দীর্ঘ ৬০ বছরের চাঞ্চল্য সৃষ্টিকারী ঘটনার সচিত্র স্মারক হয়ে উঠেছে এটি। এতে দেশ বিভাগের সময়ের সংখ্যালঘুদের দেশত্যাগের ছবি যেমন আছে, তেমনি আছে দাঙ্গাকবলিত জনপদের। আছে ২১ ফেব্রুয়ারি ভাষা আন্দোলনের ঐতিহাসিক প্রামাণ্য দলিল, আছে স্বাধীনতা-পূর্ববর্তী আইয়ুববিরোধী আন্দোলন, ছয় দফা আন্দোলন এবং ঊনসত্তরের গণ-অভ্যুত্থানের ছবি। আছে স্বাধীনতা-পরবর্তী সাতটি শাসনামলের দুর্লভ কিছু আলোকচিত্রও। সেদিক দিয়ে বলা যায়, এই বই খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এ রকম একটি প্রামাণ্য গ্রন্থ সম্পাদনের দায়ভার যাঁরা নিজেদের কাঁধে নিয়েছেন তাঁরা হলেন আনিসুজ্জামান, সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম ও মোহাম্মদ জমির; এঁরা সবাই নিজ নিজ ক্ষেত্রে ঔজ্বল্যের স্বাক্ষর রেখেছেন। সূত্র: দৈনিক প্রথম আলো, মার্চ ১১, ২০১১
War
5
পাঁচটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী নিয়ে রচিত হয়েছে এ বইটি। আর বইয়ের শেষ গল্পের নাম অনুসারে দেয়া হয়েছে বইয়ের নাম – জলজ। এখানে আমি প্রতিটি গল্পের সারসংক্ষেপ তুলে ধরার চেষ্টা করেছিঃ ডক্টর ট্রিপল-এ: পেট ওয়ার্ল্ড নামের আমেরিকান কোম্পানিটি টঙ্গীর কাছাকাছি জায়গায় একটি কুকুরের ফার্ম চালু করে। আবিদ হাসান তার একমাত্র মেয়ের জন্য একটি কুকুরছানা কিনতে যোগাযোগ করেন পেট ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে। এই ফার্মের ম্যানেজিং ডিরেক্টর ড. আসিফ আহমেদ আজহার, বন্ধুমহলে যিনি ট্রিপল এ নামেই পরিচিত। তার কাছ থেকেই জানা যায় যে তারা জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর মাধ্যমে অসাধারণ বুদ্ধিমত্তাসম্পন্ন একটি কুকুর প্রজাতি দাড় করিয়েছে যার একেকটির দাম প্রায় সাড়ে সাত হাজার ডলার। তবে ফ্যামিলির সাথে রেখে এগুলোকে টেস্ট করতে হবে, সেই সুবাদে নীলার বাসায় আসে একটি চমৎকার আইরিশ টেরিয়ার কুকুরছানা। কুকুরছানা পেয়েতো নীলা দারুণ খুশি, সে এর একটা নামও দিয়ে দিল - টুইটি। কিন্তু কিছুদিন পরেই টুইটিকে ঘিরে এক গভীর নৃশংস ষড়যন্ত্র আবিষ্কৃত হয় আসিফ হাসানের সামনে। দ্বিতীয় জীবন: কৃষ্ণপক্ষের রাত, চারদিকে হেমন্তের হালকা কুয়াশা, জোসনার নরম আলো। অসম্ভব সুন্দর একটি দৃশ্য। কিন্তু কয়েসকে এসব কিছুই স্পর্শ করছে না, কারণ সে দাড়িয়ে আছে জীবন ও মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। মাজহার নামের এক ভাড়াটে খুনি মাত্র দুই হাজার টাকার বিনিময়ে তাকে খুন করতে এসেছে, বেধেঁ রেখেছে নাইলনের সস্তা দড়ি দিয়ে। কয়েসের অনেক অনুনয় বিনয়ও থামাতে পারেনা মাজহারের রিভলবারের ট্রিগার, সবকিছু স্তব্ধ করে দেয় একটিমাত্র বুলেট। তারপর??? তারপরেও আরো কিছু বাকি থেকে যায়। সোলায়মান আহমদ ও মহাজাগতিক প্রানী: খুবই ছোট এই গল্পে হালকাভাবে সায়েন্সের ছোঁয়া আছে। সোলায়মান আহমদ নামক এক বিশিষ্ট শিল্পপতির দাবি - তাকে মহাজাগতিক প্রাণীরা ধরে নিয়ে গিয়েছিল। তিনি ভরশূন্য অবস্থায় থেকেও একটা প্রমাণ নিয়ে আসার চেষ্টা করেছেন, আর সেখানেই যত বিপত্তি। মহাজাগতিক কিউরেটর: সৌরজগতের বিভিন্ন গ্রহ ঘুরে ঘুরে গুরুত্বপূর্ণ প্রাণী সংগ্রহের অভিযানে নেমেছে দুই মহাজাগতিক কিউরেটর। কিন্তু পৃথিবী নামক গ্রহে এত বিপুল সংখ্যক প্রাণের বিকাশ দেখে তারা দ্বিধান্বিত হয়ে পড়ে, কোন প্রানী সংরক্ষণ করা উচিত আর কোনটি উচিত না সেটা বুঝতে গিয়ে হিমশিম খেতে হয়। অবশেষে তারা নিতে পারে সঠিক সিদ্ধান্ত; কিন্তু সেই সিদ্ধান্ত কি মানুষের পক্ষে যথেষ্ট অপমানজনক নয়? জলজঃ দুই শতাব্দী আগে পৃথিবী নামক ছোট্ট নীল গ্রহের কিছু মানুষ রোবটদের সাথে নিয়ে পাড়ি জমায় ক্রসিয়াস গ্রহপুঞ্জে। সেই ক্রসিয়াস গ্রহপুঞ্জ থেকে য়ুল ফিরে যাচ্ছে তার পূর্বপুরুষদের জন্মস্থানে, সূর্যের কক্ষপথে আটকে থাকা তৃতীয় গ্রহটিতে, পৃথিবীতে।দীর্ঘ এক যুগের এই মহাকাশ অভিযানে তার সাথে এসেছে রোবট ক্রন ও বায়োবট কীশ। কিন্তু পৃথিবীর কছে আসার পর প্রচন্ড আশাহত হতে হয় য়ুলকে, যখন সে জানতে পারে এই পৃথিবীতে প্রাণের অস্তিত্ব বিলুপ্ত, বিষাক্ত এই গ্রহে কোন প্রানীর বেচেঁ থাকা অসম্ভব। একরাশ হতাশা নিয়ে পূর্বপুরুষদের জন্মস্থানে পা রাখে য়ুল, কিন্তু সে কি জানত এখানে কি বিস্ময় অপেক্ষা করে আছে তার জন্য। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ লেখকের অন্যান্য বইয়ের তুলনায় এই বইটি আমার কাছে অতটা ভাল লাগেনি। তবে বইয়ের প্রথম গল্পটা (ডক্টর ট্রিপল-এ) ছিল অসাধারন।
Science-Fiction
4
"আমার পিতৃ প্রদত্ত নাম খালেদ মোশাররফ। ১৯৩৭ সালের নভেম্বর মাসে আমার জন্ম । জন্মস্থান জামালপুর জেলার ইসলামপুরের অন্তর্গত মোশাররফগঞ্জ গ্রামে । পিতার নাম মোশাররফ হোসেন এবং মাতা জমিলা আখতার। আমি রূপকথায় বিশ্বাসী নই । কিংবদন্তীর কথাবার্তাও আমার বিশেষ জানা নেই । আমি বাংলাদেশের ইতিহাসের সামান্য একটু অংশ সগর্বে বলতে পারি । কেননা এই গৌরবজ্জল ইতিহাস যাঁরা রচনা করেছেন, আমি তাঁদেরই একজন । সব সময়ে মনে রাখবেন, বাঙালি জাতির সহস্রাধিক বছরের ইতিহাসে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে পাকিস্তানিদের বিরুদ্ধে বিজয় হচ্ছে একমাত্র উল্লেখযোগ্য বিজয় । আর এটাই হচ্ছে আমাদের রক্তাক্ত প্রকৃত ইতিহাস।১৯৭১ সালে মুজিবনগরের নির্বাসিত গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের সার্বিক তত্ত্বাবধায়নে সংগঠিত মহান মুক্তিযুদ্ধে আমি ছিলাম ২ নম্বর সেক্টরের সেক্টর কমান্ডার এবং ‘কে’ ফোর্সের প্রধান । বাংলাদেশের নতুন প্রজন্মের জন্য আমার এই জবানবন্দি । এটা তো শুধু জবানবন্দি নয়, এটা হচ্ছে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের একটি পরিচ্ছদ মাত্র । অথচ এসব বাস্তব ইতিহাস আমাদের স্কুল কলেজের পাঠ্য পুস্তকে হয় অনুপস্থিত- নাহয় বিকৃতভাবে উপস্থাপিত ।" বাকিটা বই পড়েই জেনে নেবেন।
Political
3
বইটা খুলতেই সম্পূর্ণ নতুন আর ভিন্নধর্মী একটা জিনিস চোখে পড়েছিল। লেখক বইয়ের সাথে পড়ার একটা সময়সূচী ঠিক করে দিয়েছিলেন। সেই সাথে এটাও বলে দিয়েছিলেন যে, সূচি না মানলে সমস্যা নেই, তবে সূচি মেনে পড়লেই বইটা পড়ে সর্বোচ্চ তৃপ্তি পাওয়া যাবে! আমার খুব ইচ্ছা ছিল লেখকের বেঁধে দেয়া সময়ানুযায়ী বইটা পড়তে। কিন্তু আমি ব্যস্ত মানুষ, চাকরি-পড়াশোনা অনেক কিছু সামলিয়ে তবেই আমার জন্য পড়ার সময় বের করতে হয়। লেখকের দেয়া সময়ানুযায়ী বইটি পড়া আমার পক্ষে সম্ভব হয়নি। তবে আমি লেখককে আশ্বস্ত করতে চাই, এতে আমার তৃপ্তি বিন্দুমাত্রও কমেনি। অসাধারণ লিখেছেন আপনি। জীবনে খুব কম বই-ই আমাকে এতটা মজা দিতে পেরেছে। দেশের শীর্ষস্থানীয় ধনী পরিবারগুলোর মাঝে একটি হল সৈয়দ কলিমুদ্দিনদের পরিবার। স্বামীর অবর্তমানে মিসেস কলিমুদ্দিনই সবকিছু দেখাশোনা করেন। এই পরিবারের একমাত্র মেয়ে আয়েশা, একদিন হঠাৎ করে ঘুমিয়ে পড়ে আর ঘুম থেকে জাগেনি। ডাক্তাররা অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা করেও তার কোন সমস্যা ধরতে পারেনি। তার দেহের সকল কার্যক্রমই স্বাভাবিক, শুধু ঘুমটাই ভাঙ্গছে না। মিসেস কলিমুদ্দিন ভাবলেন তার মেয়ের পার্থিব কোন সমস্যা যেহেতু ডাক্তাররা ধরতে পারছেন না, তাহলে সমস্যাটা কি অপার্থিব? ডাক পড়ল গল্পের নায়ক মুমিনুল ইসলাম মুমিনের। মুমিনুল ইসলাম মুমিন, সত্যি বলছি এত হাবাগোবা নায়ক আমি আমার জীবনে আর দ্বিতীয়টি দেখিনি। বেচারাকে আরেকটু চালাক দেখালে কি এমন ক্ষতি হত লেখকের? বেচারারে সবাই খালি ধমকায়! থ্রেটের উপর রাখে! আর বেচারা কাউকে কিছু বলতেও পারেনা, সইতেও পারেনা! বলদা একটা... :p মুমিনের নিজের ছোটবেলার খুব ভয়ংকর একটা অভিজ্ঞতার কারণে সে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল অপার্থিব জগতের বাসিন্দাদের কাজে আর কখনো বাঁধা হয়ে দাঁড়াবে না। কিন্তু ম্যাডাম কলিমুদ্দিনের কাছ থেকে দায়িত্ব পেয়ে তার নিজের কাছে করা প্রতিজ্ঞা তাকে ভাংতেই হল। কিন্তু কাজে নেমে দেখল অপার্থিবতার এই বিশাল জগতে সে এখনো শিশু, তার আরো অভিজ্ঞ কারো সাহায্য দরকার, একজন রিয়েল ম্যাজিশিয়ানের। মুমিনের সাহায্যার্থে এগিয়ে এল গল্পের নায়িকা দূর্দান্ত স্মার্ট অ্যানিমা, যে কিনা নিজেই বলে বেড়ায় যে এটা তার আসল নাম নয়। হাবাগোবা নায়কের সাথে দূর্দান্ত স্মার্ট নায়িকা, অন্যদের কাছে কেমন লেগেছে জানি না, কিন্তু আমার কাছে অসাম লেগেছে! মজা পেয়েছি পুরো বইতে অ্যানিমা মুমিনকে যতবারই ডেকেছে তার পুরো নাম ধরে ডেকেছিল দেখে, আর মুমিন তাকে ডাকত আপা! নায়ক কখনো নায়িকাকে আপা ডাকে? বলদা -_- মুমিন আর অ্যানিমা কাজে নেমে দেখে ঘটনা তারা যেমন ভেবেছিল তার চেয়েও অনেক ভয়াবহ। শক্তিশালী কোন এক প্রতিপক্ষ অশুভ একটা শক্তিকে পৃথিবীতে ডেকে আনতে চাচ্ছে, চাচ্ছে পুরো পৃথিবীটা ধ্বংস করে দিতে। পুরো পৃথিবীর ভবিষ্যৎ ওদের দুজনের হাতে। পৃথিবীকে বাঁচানোর এক অসম লড়াইয়ে জড়িয়ে পড়ে ওরা দুজন। সত্যি বলতে কি, বইটা যে থিম নিয়ে লেখা হয়েছে এই থিম নিয়ে যে আদৌ লেখা সম্ভব এমনটা কখনো ভাবতেও পারিনি। লেখক সত্যিই অসাধারণ একটা কাজ দেখিয়েছেন। প্লট নির্বাচন থেকে শুরু করে বর্ণনাভঙ্গি, সবকিছুই মারাত্মক ছিল। কাহিনী বর্ণনা এত নিখুঁত ছিল যে পুরো ঘটনাটা ভিজ্যুলাইজেশন করতে একটুও কষ্ট হয়নি, মনে হচ্ছিল বই পড়ছি না, কোন মুভি দেখছি। বইয়ের সবচেয়ে অসাধারণ পার্ট ছিল ম্যাজিক্যাল ফাইটগুলো। ছোটবেলায় আলিফ লায়লা দেখে যেমন শিউরে উঠতাম, ঠিক তেমনি শিউরেছি। আহ.... আর কবে এমন আরেকটা মাস্টারপিস পড়ার সৌভাগ্য হবে কে জানে। অনেকের কাছেই মনে হতে পারে যে বইয়ের কলেবর বাড়ানোর জন্য কাহিনীকে অযথা ঝুলানো হয়েছে। বিশেষ করে মুমিনের ছোটবেলার কাহিনী এত বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করতে গিয়ে। আমারও তেমনটাই মনে হয়েছিল। কিন্তু ভুলটা ভেঙ্গে যায় কাহিনীতে মূল ভিলেনের আগমন ঘটার পর। ভিলেনকে দেখানোর জন্য পূর্বের কাহিনী বর্ণনার প্রয়োজন ছিল। তাছাড়া মুমিন কেন এত হাবাগোবা, সেটাও তার পাস্ট না জানলে জানা যেত না! :p মজা লেগেছে বইয়ের একেবারে শেষ লাইনে এসে মুমিনকে অ্যানিমার আসল নাম বলা দেখে। আফসোস হয়েছে একসাথে এতটা পথ পাড়ি দিয়ে আসার পরেও মুমিন আর অ্যানিমার মাঝে কিছু হতে হতে গিয়েও হল না দেখে। বোকাচোদা পাবলিক, আরেকটু স্মার্ট হলে ঠিকই অ্যানিমাকে পটিয়ে ফেলতে পারত। ইচ্ছা করছিল মুমিনের পাছায় একটা লাত্থি দিই! -_- গত বইমেলায় বের হওয়া আর্কন পড়ে লেখক তানজীম রহমানের ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। আর অক্টারিন পড়ার পর তার লেখনীর প্রতি আমার মুগ্ধতা মাত্রা ছাড়িয়েছে। অন্যদের কথা জানি না, গত দশ বছরে আমার পড়া বইগুলোর মাঝে এটাই সবচেয়ে সেরা। ^_^ শুরুটা করেছিলাম আশরাফুল সুমন ভাইয়ের রিভিউর কথা দিয়ে। শেষটাও করি তার রিভিউর একটা কথা দিয়ে। তিনি লিখেছেন- 'এই বই যদি বাংলায় প্রকাশিত না হয়ে পশ্চিমা কোন দেশ থেকে ইংরেজিতে প্রকাশিত হত, তবে এটা নিশ্চতভাবেই ইন্টারন্যাশনাল বেস্ট সেলার হত।'- এই কথার সাথে আমি সম্পূর্ণ একমত।
Thriller
1
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই: বিজ্ঞানী সফদর আলীর মহা মহা আবিষ্কার লেখক: মুহম্মদ জাফর ইকবাল মুল্য: 200 টাকা ধরন: সায়েন্স ফিকশন প্রকাশনা: জ্ঞানকোষ প্রকাশনী রিভিউ: সফদর আলী একজন বিজ্ঞানী। তার সাথে লেখকের দেখা হয়। লেখকের সাথে বিজ্ঞানী সফদর আলীর নানা মজার ঘটনা ই উঠে আসে এই উপন্যাসে। কীভাবে সফদর সাহেব গিনিপিগ দিয়ে বিরিয়ানি রান্না করান, কীভাবে তিনি বানরকে পোষ মানান, সেই পোষ মানাতে গিয়ে কী হয়, গাছকে ব্যবহার করে কিভাবে গাড়ি বানান, পীরবাবাকে নিয়ে মজার ঘটনা, হেরোইন কারবারীদের গ্রেফতার এবং মোরগ নিয়ে মজার মজার ঘটনাই এ উপন্যাসে স্থান পায়। এসবকিছুই লেখকের গল্প বলার অসাধারন অভিজ্ঞতার জন্য অনবদ্য হয়ে উঠে আসে এ উপন্যাসে। প্রকৃতপক্ষে এমন ব্যক্তির সাথে দেখা হওয়া তো সম্ভব নয়, তারপরেও উত্তম পুরুষে বর্ণিত হওয়ায় মনে হয়, যেন লেখক নিজেই এমনটা দেখেছেন, তিনি ঘটনাসমূহের সাক্ষী। পাঠপ্রতিক্রিয়া: 'সায়রা সায়েন্টিস্ট' 'বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা', এ উপন্যাস গুলো একই ধারার। এখানে কোনো উথ্থান পতন নেই। এছাড়া সফদর আলী ঠিক কোন ধরনের বিজ্ঞানী তাও বুঝা যায় না, দেখা যায়, তিনি সব বিষয়ে অনেক জ্ঞান রাখেন, যা বাস্তবতা বিবর্জিত। এছাড়াও এমন কিছু ড্রাগসের নাম উঠে এসেছে, যা অতিমাত্রায় কাল্পনিক। তবুও পড়তে ভালো লাগে, সময়কে উপভোগ করতে এ বইটা অসাধারণ তো বটেই। আমার কাছে এর রেটিং 3.25/5 ।
Science-Fiction
4
একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধে কিংবদন্তিসম খ্যাতি-অর্জনকার বীরযোদ্ধা শাফায়াত জামিল, লড়াইয়ের ময়দানে অকুতোভয় যে-মানুষটি বাস্তবজীবনে পরম মিতবাক ও নিভৃতচারী। তদুপরি স্বাধীনতা-উত্তরকালে ষড়যন্ত্রকারীদের পুনরুত্থান, বঙ্গবন্ধুর নির্মম হত্যাকাণ্ড এবং নভেম্বরের প্রতিবিপ্লবী চক্রান্তে চার জাতীয় নেতা ও অগ্রণী মুক্তিযোদ্ধাদের হত্যায় ব্যথিতচিত্তে তিনি নিজেকে গুটিয়ে নিয়েছিলেন আরো বেশি। অথচ একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের একেবারে সূচনাকালে তাঁর নেতৃত্বেই ঘটেছিল বেঙ্গল রেজিমেন্টের প্রায় পাঁচশ’ সৈনিকের বিদ্রোহ, প্রাথমিক প্রতিরোধের সেটা ছিল গৌরবোজ্জ্বল অধ্যায়। এরপর রংপুর সিলেটের বিভিন্ন রণাঙ্গনে শত্রুর ত্রাস হয়ে বহু অপারেশনে নেতৃত্ব দিয়েছেন শাফায়েত জামিল, জীবন-মৃত্যু পায়ের ভৃত্য করে স্বদেশের মুক্তির জন্য যে মরণখেলায় মেতেছিলেন তার শেষ পর্যায়ে গুরুতরভাবে আহত হয়েছিলেন তিনি। চারিত্রিক দৃঢ়তা ও আত্মত্যাগী মনোভাব দ্বারা যুদ্ধক্ষেত্রে তিনি অনুপ্রাণিত করেছেন অগণিত সহযোদ্ধাদের এবং হয়ে উঠেছেন একাত্তরের বাঙালির বীরগাথার অন্যতম রূপকার। দীর্ঘ পঁচিশ বছর পর তিনি বাঙ্ময় হয়ে বলেছেন মুক্তিযুদ্ধের কথা, মেলে ধরেছেন রণাঙ্গনের অগ্নিঝরা স্মৃতি। সেই সঙ্গে যোগ করেছেন পঁচাত্তরের নির্মম নিষ্ঠুর হত্যালীলার বিবরণ, যে-ঘটনাধারা অত্যন্ত কাছ থেকে প্রত্যক্ষ করেছেন তিনি। সব মিলিয়ে শাফায়াত জামিলের গ্রন্থ হয়ে উঠেছে আমাদের ইতিহাসের অনন্য ও অপরিহার্য সংযোজন। তথ্যঃ সংগৃহীত
Political
3
মার্ডার মিস্ট্রি হয়তো পড়েছেন আগে, কিন্তু পজেশন মিস্ট্রি ? কোন অশুভ শক্তির ছায়া পড়েছে দেশের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবারের একমাত্র মেয়ের ওপর-- সে প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে নিয়োগ করা হলো অদ্ভুত এক মানুষকে; অতিপ্রাকৃত ক্ষমতার সাথে যার আছে নিবিড়, তিক্ত অভিজ্ঞতা । কিন্তু তদন্তে ডুব দেবার পরই বুঝতে পারলো চোরাবালি আসলে কতোটা গভীর । একা একা সমস্যার জট খোলা সম্ভব নয়, অন্য এক ধরনের বিশেষজ্ঞের সাহায্যের দরকার । দরকার একজন রিচুয়াল ম্যাজিশিয়ানের । ওরা দু-জন মিলেও কি এই মারাত্মক রহস্যের জাল ভেদ করতে পারবে ? প্রতি পদে অপেক্ষা করছে বিপদ--ছায়ার আড়ালে গা ঢাকা দিয়ে আছে অকল্পনীয় ক্ষমতাধর এক আততায়ী । প্রচন্ড প্রভাবশালী জাহানারা মুনীর, অপ্রকৃতস্থ জিহাদ,পীরের মুরীদ রেহানা খালা , ঘুমন্ত আয়েশা প্রত্যেকটা চরিত্রই রীতিমত তাকে পাজলড করে তোলে,সপ্তাহান্তেই সে বুঝতে পারে এ কোন জীনের আছড় নয় , কেউ নিয়ন্ত্রন করছে মুনির ফ্যামিলির একমাত্র মেয়ে আয়েশার স্বপ্নকে ... হয়তোবা সে খুব কাছের কেউ ... ? কে সে? এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতেই পর্দায় আগমন ঘটে অন্যতম প্রধান চরিত্র ম্যাজিশিয়ান "অ্যানিমা"র ... ! তাও আবার যেন তেন ম্যাজিশিয়ান নাহ ,পুরোপুরি ড্রিগ্রীধারি ব্ল্য্যাক ম্যাজিশিয়ান !!! মুমিন আর অ্যানিমা মিলে যখন সব চেষ্টা করে ক্লান্ত , অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে তাদের সামনে এসে পরে ভয়ংকর সত্যটা ... এতোটাই ভয়ংকর যা ঘটতে দিতে থাকলে হুমকীর মুখে পড়বে পুরো মানবসভ্যতা,হয়তোবা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে পৌছে যাবে পৃথিবী ... !!!! আর্কন-খ্যাত তানজীম রহমানের হরর থৃলার অক্টারিন-এর পাতায় লুকিয়ে আছে খুন, জাদু, কিংবদন্তি আর চক্রান্তের আশ্চর্য এক উপন্যাস যা চুম্বকের মতো আপনার মনোযোগকে আকর্ষণ করবে ।
Thriller
1
#বিস্তারিত_রিভিউ : আচ্ছা আপনি একবার ভাবুন তো আপনাকে কেউ খুবই যন্ত্রণা দিচ্ছে, লোহার রড গরম করে ছ্যাকা দিচ্ছে তারপরও আপনি খিলখিলিয়ে হাসছেন। যিনি আপনাকে অত্যাচার করছে সে জানে আপনি এত অত্যাচারেও আনন্দিত কিন্তু শুধু আপনি জানেন কান্নার অনুভূতিটাও হাসির মাধ্যমেই দিচ্ছেন। যন্ত্রণা পেয়ে আপনার ইচ্ছা হচ্ছে প্রান ভরে কাদতে চিৎকার করতে কিন্তু আপনি সেটা পারছেন না কান্নার বদলে আসছে শুধুই হাসি। অথচ আপনি কাদছেন কিন্তু আপনার কান্না যন্ত্রণা কেউ বুঝতে পারছেনা। সত্যিই কি এমন কেউ নেই যারা এই এনিম্যানদের আসল চেহারা উদঘাটন করতে পারে......? আছে ,দুজন আছে। একজন তিষা আর অন্যজন "জন "। তিষার জন্ম বাংলাদেশে হলেও বতর্মানে আমেরিকায় বাবা মায়ের সাথে থাকে। বাবা মা দুজনেই ভীষন ব্যাস্ত। একদম একা হওয়ার কারনে বাবা তাকে ছোট্ট একটা কুকুর এনে দেয়। পরবর্তীতে এই কুকুরটাই তিষার জীবন বাঁচায় নিজের জীবন দিয়ে। সেটা এক মর্মদন্তু কাহিনী ...সবাই যখন ভাবছিলো তিশার বেচে থাকার আর কোন আশা নেই তখন তিষা বেচে উঠল। সবাই ভীষন খুশী সেই আনন্দে তিষা গিফট পেলো এনিম্যান। পৃথিবীতে মানুষ যেমন কুকুর পোষে ঠিক তেমনি বর্তমানে এনিম্যান পোষে। অনেকেই দাবী করেন এর জন্ম মায়ের গর্ভে কিন্তু যারা তৈরী করেছে তারা দাবী করে এটা কৃত্রিম ভাবে তৈরী। তবে তিষা এনিম্যানের অবাক করা কিছু বিষয় টের পায় কেন জানি তার মনে হয় এটা মানব শিশু এবং এর পেছনে রয়েছে অনেক বড় রহস্য, সেই রহস্য মিশকা ছাড়া আর কেউ খুলতে পারবে না, মিশকা হল তিষার পোষা এ্যানিম্যান। কিন্তু মিশকা তো কথা বলতে পারে না এমনকি সোজা হয়ে দাড়াতেও পারেনা বলে হাতে পায়ে হাটে। স্মৃতি শক্তি এতটাই দুর্বল যে একটু আগের বিষয় মাথা থেকে চলে যায়। তাহলে কিভাবে তিষা এই অজানা রহস্য উদঘাটন করবে????? মূল চরিত্রে জন নামে একজন দিয়েছি, অথচ তার কোন ঘটনা লিখলাম না। লিখলাম না এ কারনে যে সে গল্পে অনেক বড় টুইস্ট। টুইস্ট বিষয়ে কোন কথা আমি আগেভাগে বলতে চাইনা তবে এতটুকু বলবো কাহিনীতে জনের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে। কাহিনী আমার ভালো লেগেছে সেইসঙ্গে গল্পের শেষটায় আমি কোন নতুনত্ব পাইনি। যারা পড়বেন কিংবা পড়েছেন তারা জানেন এরকম ভাবে কাহিনী শেষ তিনি অন্য গল্পেও করেছেন।খল নায়িকা সম্পর্কে কিছু বলি এই মহিলা যথেষ্ট রাক্ষসী। তবে তার সমস্ত চুল টেনেটুনে ছেঁড়ার বিষয়টাও গা শরিরি করার মত। যাইহোক আশাকরি আপনাদের ভালো লাগবে।
Science-Fiction
4
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_এপ্রিল বইয়ের নামঃ মিসির আলী আপনি কোথায়। লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ, ক্যাটাগরিঃ সমকালীন উপন্যাস, মূল্যঃ 141 লেখক পরিচিতিঃ হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ – ১৯ জুলাই, ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্য দিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকহিনীর পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। কাহিনী সংক্ষেপেঃ মিসির আলি অবাক হয়ে কুয়াশা দেখছেন। কুয়াশা দেখে অবাক বা বিস্মিত হওয়া যায় না। তিনি হচ্ছেন। কারণ কুয়াশা এক জায়গায় স্থির হয়ে নেই। সে জায়গা বদল করছে। তার সামনে মাঝারি সাইজের আমগাছ। কুয়াশায় গাছ ঢাকা। ডালপালা পাতা কিছু দেখা যাচ্ছে না। হঠাৎ কুয়াশা সরে গেল। আমগাছ দেখা গেল। সেই কুয়াশাই ভর করল পাশের একটা গাছকে, যে গাছ তিনি চেনেন না। বাতাস কুয়াশা সরিয়ে এক জায়গা থেকে আরেক জায়গায় নিচ্ছে এই যুক্তি মেনে নেয়া যাচ্ছে না। বাতাস বইলে তিনি টের পেতেন শীতের বাতাস শরীরে কাঁপন ধরায়।এই কুয়াশার ইংরেজি কি Fog নাকি Mist? শহরের কুয়াশা এবং গ্রামের কুয়াশা কি আলাদা? শহরের ধূলি ময়লার গায়ে চেপে যে কুয়াশা নামে তাকে কি বলে Smog? আয়না বলল, রাতে ক্যারাম খেলার খটাস খটাস ভৌতিক শব্দ হচ্ছে। আপনি নির্বিকার, মাথা উঁচিয়ে দেখার চেষ্টাও করলেন না। ঘুমিয়ে পড়লেন। আপনি ছাড়া অন্য যে কোনো মানুষ ভয়ে অস্থির হত। ডাকাডাকি শুরু করত। আপনি একটুও ভয় পাননি, এর কারণ কি স্যার? মিসির আলি বললেন, বেশির ভাগ মানুষ সংশয়বাদী। তাদের ধারণা ভূত-প্ৰেত থাকলে থাকতেও পারে। আমার মধ্যে এই ধরনের কোনো সংশয় নেই। ক্যারাম খেলার শব্দ কি ভাবে হল? মিসির আলি বললেন, শব্দটা পাশের ঘরে হয়েছে। কেউ একজন খটাস খটাস শব্দে ক্যারাম খেলেছে। সেই কেউ টা কে? আমি? না তুমি না। তোমার বাবা। কিভাবে বুঝলেন? মিসির আলি সিগারেট ধরাতে ধরাতে বললেন, তোমার বাবা আমাকে আস্তিক বানানোর চেষ্টা করছেন। পাশের ঘরে খটাস খটাস শব্দ করে আমাকে ভূতের ভয় দেখাতে চাচ্ছেন। মনে হয় বঙ্গোপসাগরে ডিপ্রেসন হয়েছে। দুপুর থেকে আকাশে মেঘা জমতে শুরু করেছে। সন্ধ্যার পর থেকে টিপটপ বৃষ্টি, ঝড়ো বাতাস। তাঁরকুল ইসলাম আনন্দিত— ঝড় বৃষ্টি উপলক্ষে বিশেষ কিছু রান্না হবে। খিচুড়ি, ঝাল গরুর মাংস। ময়মনসিংহে BT ট্রেনিংয়ের সময় তিনি গরুর মাংস রান্নার একটা পদ্ধতি শিখেছিলেন। সেটা করবেন কি-না বুঝতে পারছেন না। মাটির হাঁড়িতে মাংস, লবণ সামান্য তেল এবং এক গাদা কাচামরিচ দিয়ে অল্প আঁচে জ্বাল দেয়া। অন্য সব মসলা নিষিদ্ধ। মাংসের বিশেষ যে গন্ধ আছে, কাচামরিচ সেই গন্ধ নষ্ট করবে। আলাদা ফ্লেভার নিয়ে আসবে।। তিনি নিজেই গরুর মাংস আনতে গেলেন। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ মিসির আলি, বাংলাদেশের প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় রহস্যময় চরিত্র। মিসির আলি কাহিনীগুলো রহস্যমাত্রিক। মিসির আলির কাহিনীগ‌ুলো ঠিক গোয়েন্দা কাহিনী নয়, কিংবা 'ক্রাইম ফিকশন' বা 'থ্রিলার'-এর মতো খুনি-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া নয়, বরং মনস্তাত্ত্বিক, বিজ্ঞাননির্ভর এবং প্রচন্ড যুক্তিনির্ভর কাহিনীর বুনটে বাঁধা। বরং অনেক ক্ষেত্রে একে রহস্যগল্প বলা চলে। চারিত্রিক দিক দিয়ে মিসির আলি চরিত্রটি হুমায়ূন আহমেদের আরেক অনবদ্য সৃষ্টি হিমু চরিত্রটির পুরোপুরি বিপরীত। তরুণ হিমু চলে প্রতি-যুক্তির তাড়নায়, অপরপক্ষে বয়োজ্যেষ্ঠ মিসির আলি অনুসরণ করেন বিশ‌ুদ্ধ যুক্তি। এই যুক্তিই মিসির আলিকে রহস্যময় জগতের প্রকৃত স্বরূপ উদঘাটনে সাহায্য করে। সেসব কাহিনীর প্রতিফলন ঘটেছে মিসির আলি সম্পর্কিত প্রতিটি উপন্যাসে। তাই প্রতিটি গল্প অসাধারণ এক কথায়।
Fiction
0
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ রিভিউ নংঃ ১২ উপন্যাসঃ মা লেখকঃ আনিসুল হক, ক্যাটাগরিঃ মুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস, মূল্যঃ৩৭৪ টাকা প্রকাশনীঃসময় লেখক পরিচিতিঃ আনিসুল হক (জন্ম: মার্চ ৪, ১৯৬৫) একজন বাংলাদেশী কবি, লেখক, নাট্যকার ও সাংবাদিক। বর্তমানে তিনি বাংলাদেশের দৈনিক প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক এবং কিশোর আলোর সম্পাদক পদে কর্মরত আছেন। মুক্তিযুদ্ধকালীন সময়ের সত্য ঘটনা নিয়ে তাঁর লেখা মা বইটি বেশ জনপ্রিয়।বাংলা ভাষার পাশাপাশি বইটি দিল্লী থেকে ইংরেজি ভাষায় এবং ভুবনেশ্বর থেকে উড়ে ভাষায় প্রকাশিত হয়েছে। কাহিনী সংক্ষেপেঃ একজন আদর্শবান ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মা -কে ঘিরে রচিত এই উপন্যাসটি। লড়াই করে বে‍ঁচে থাকা ! শত আঘাতেও মাথা উঁচু করে বেঁচে থাকা হার না মানা এক আদর্শবান মায়ের বাস্তব জীবনী নিয়ে লেখা এই বই। শহীদ আজাদের মা সাফিয়া বেগম ছিলেন ঢাকার সবচেয়ে প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজনের স্ত্রী। তিনি ছিলেন আত্মমর্যাদাবান। তাই তার স্বামী যখন দ্বিতীয় বিবাহ করলেন, তখন তিনি তা মেনে নেননি। ছোট্ট আজাদকে নিয়ে শত বিলাসিতা আর প্রাচুর্যের ঘেরাটোপ পেরিয়ে নেমে এসেছিলেন নিজের গড়া যুদ্ধক্ষেত্রে। সেই যুদ্ধের তিনি ছিলেন সফল যোদ্ধা। অভাব অনটনকে পেছনে ফেলে নিজ হাতে তিনি মানুষের মত মানুষ করে তুলেছিলেন আজাদকে। ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে আজাদ তাঁর বন্ধুদের সাথে যোগ দেয় । ১৯৭১ সালের ২৯ আগস্ট পাকিস্তানি বাহিনী রেইড চালিয়ে ক্র্যাক প্লাটুন এবং সংশ্লিষ্ট অনেক বিশিষ্ট ব্যক্তিদের ধরে নিয়ে যায় । আজাদের বাড়িতেও রেইড হয় , আজাদ তাঁর সহযোদ্ধাদের সাথে ধরা পড়েন । পাকিস্তানিরা তাদের নির্মমভাবে নির্যাতন করে তথ্য জানতে চায় । প্রচণ্ড অত্যাচারের মাঝেও তারা আজাদের মুখ থেকে কিছু বের করতে পারে না । তখন তার মাকে বলা হয়, ছেলে যদি সবার নাম-ধাম ইত্যাদি বলে দেয়, তাকে ছেড়ে দেওয়া হবে । আজাদের মা ছেলেকে বলেন কিছুই না বলতে । আজাদ বলে, মা দুদিন ভাত খাই না, ভাত নিয়ে এসো। মা পরের দিন ভাত নিয়ে হাজির হন বন্দিশিবিরে, কিন্তু ছেলের দেখা মেলে না। আজাদের মা আর কোনোদিনও জীবনে ভাত খাননি। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ কিছু বই থাকে যেগুলোর রেটিং হয়না, এককথায় বলতে গেলে আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ এক মা এর কাহিনী পড়লাম। আর চোখে পানির ধারা আটকানো যাচ্ছে না। আমি বাজি ধরে বলবো এমন কোন বই পড়ুয়া কে পাবোনা যে কি না বইটি পড়ে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে থাকবে না। জীবনে এই একটা বই হলেও পড়ে দেখা উচিত।
War
5
বাংলাদেশ এর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার ১৮ মিনিট এর অনবদ্য এক ভাষণে বাংলাদেশ এর জনগণ ঝাঁপিয়ে পড়ে মুক্তিযুদ্ধে এবং ছিনিয়ে আনে স্বাধীনতা। এই মহান নেতার জীবনী সংক্ষিপ্ত করে ছোটদের জন্য এই বইটিতে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে। বাংলাদেশ এর শিশু ও কিশোরদের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বই এটি কারন তাদের মধ্যে দেশপ্রেম জেগে উঠবে।
Political
3
ভৌতিক কাহিনী না হয়েও কার লেখা পড়লে আবালবৃদ্ধবণিতার গায়ের লোম নিমিষেই দাড়িয়ে যায়? মহাপরাক্রমশালী অথবা দুর্দান্ত সাহসী একজন ব্যাক্তিরও পালস রেট বেড়ে যাবে কার লেখা উপন্যাস পড়লে? মনস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণে কে অপ্রতিদ্বন্দ্বী? নৃশংসতা রচনায় কে সেরা? সাইকোলজিকাল থ্রিলারের অবিসংবাদিত গুরু কে? একটাই উত্তর- থমাস হ্যারিস। বাস্তবের কোন মানব না হয়েও কে সেই ব্যাক্তি যিনি মনস্তাত্ত্বিক জগতের কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছেন? মর্ষকামী এবং সিরিয়াল কিলারদের বর্তমান গুরু কে? উত্তর একটাই- ডঃ হানিবল লেকটার। হানিবল দ্য কানিবল। মানুষখেকো হানিবল। থমাস হ্যারিস এমন একজন কিংবদন্তী লেখক যার রচিত সাইকোলজিকাল থ্রিলার সিরিজ হানিবল লেকটার কিছু কিছু ক্ষেত্রে লেখককেই ছাড়িয়ে যেতে চায়। এক অসামান্য সিরিজের অসামান্য প্রথম বই রেড ড্রাগন। গ্রীষ্মের শান্ত রাত। শহরতলীর এক সুখী পরিবার। কেউই বাঁচল না। সবাইকে নৃশংসভাবে হত্যা করা হয়। পরপর দু'মাসে দুইটি পরিবারকে নির্মূলে হত্যা করা হল। ভয়ঙ্কর এই সিরিয়াল কিলার। সবারই অলক্ষ্যে কোন চিহ্ন না রেখেই তার হত্যাকর্ম করে যাচ্ছে। এফবিআই কোন কূলকিনারাই পাচ্ছে না। তাদের নাভিশ্বাস উঠে গেছে। শরনাপন্ন হল এফবিআই এর অকালে অবসরে যাওয়া এক এজেন্ট উইল গ্রাহামের। সিরিয়াল কিলার ধরার ব্যাপারে যে দুর্দান্ত চৌকশ। তার হাতে সর্বশেষ ধৃত ডঃ হানিবল লেকটার তাকে প্রায় মেরেই ফেলেছিল। ডঃ লেকটার বর্তমানে জেলে আছেন। কিন্তু জেলে থাকলেও তার ক্ষমতা অসীম। সকল সিরিয়াল কিলারের গুরু হানিবল লেকটারের কাছে উইল গ্রাহাম বাধ্য হয়ে শরনাপন্ন হল নতুন এই সিরিয়াল কিলারকে ধরার জন্য। ভয়ঙ্কর। আতঙ্কজনক। রোমহর্ষক। সত্যিকারের কাঁটা গায়ে লাগলে যেমন লাগে ঠিক তেমনই রেড ড্রাগন পড়লে মনে হবে গায়ে কাঁটা দিচ্ছে। কিছু কিছু অধ্যায়ে এত রোমহর্ষকভাবে লেখক লিখেছেন যে আপনার হৃতপিণ্ডের আওয়াজ আপনি শুনতে পাবেন। নৃশংসতা কতটুকু পর্যন্ত জঘন্য হতে পারে, মানুষ কতটা নির্মম হতে পারে তারই এক কুৎসিত উদাহরন রেড ড্রাগন। একজন মানুষের ভালো ও মন্দ দিকের এক ফরেনসিক এনাটমি এই রেড ড্রাগন। এই কাহিনীর সিরিয়াল কিলারের চরিত্র গঠনটি এতই অসামান্য যে তা সাহিত্যে নোবেল পাওয়ার যোগ্যতা রাখে এই বই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে থ্রিলার তো আর কোন প্রথম শ্রেণীর সাহিত্য নয়। অনেকেই আছেন যারা অন্যের কাছে শুনে হানিবল লেকটার সিরিজ পড়া শুরু করে অর্থাৎ প্রথম বইটা পড়ে, তাঁরা সিরিজের নামকরন নিয়ে একটু দ্বিধাদন্দে থাকে। কেনই বা এই নাম? কিন্তু সিরিজ এগিয়ে যাওয়ার সাথে সাথে তাদের ধারনাও পাল্টে যায়। এটি হানিবলেরই সিরিজ। কোন সন্দেহ নেই এতে। প্রথমেই বলেছি থমাস হ্যারিস সাইকোলজিকাল থ্রিলারের অবিসংবাদিত রাজা। তাঁর দীর্ঘ ক্যারিয়ারে মাত্র পাঁচটি উপন্যাস লিখেছেন। তার মধ্যে ৪টিই আবার এই হানিবল লেকটার সিরিজের। তাঁর গল্প বলার ধরন সর্বোপরি থ্রিলার জগতেই অসামান্য। প্রথম যখন ২০০৬/০৭ এ উনার লেখা পড়ি, তখনই আমার মাথানস্ট হয়ে গিয়েছিল। উনি অনেক জটিল করে লিখলেও উনার লেখা পড়তে ইংলিশে এক্সপার্ট হওয়ার প্রয়োজন নেই। তারপরও অনেক জটিল টার্ম এবং জটিল বাক্য গঠনের জন্য অনেকেই তাঁর উপন্যাস কয়েক পাতা পড়েই রেখে দেয়। কিন্তু তাঁরা জানে না কি মিস করেছে তাঁরা। দুর্বল চিত্তের মানুষের এই উপন্যাস না পড়াই শ্রেয়। পড়লে রাতেই পড়বেন, আনন্দের পূর্ণতার জন্য।
Thriller
1
#রকমারী_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #রিভিউ_৩ ( আগস্ট রিভিউ - ১২) 'বাচ্চা- কাচ্চা' দ্বিরুক্তিমূলক শব্দ। কিন্তু আমাদের সমাজে অনেকেই আছে যারা বাচ্চা-কাচ্চা দেখলেই একেবারে আদর করে, চুমু খেয়ে এমন দলাই- মালাই করে যে বাচ্চাটার প্রাণই আদরের আতিশয্যে ওষ্ঠাগত হয়ে যায়। আবার আরেকদল মানুষ আছে যারা বাচ্চা-কাচ্চা দেখলে কি নাম শুনলেই আঁতকে উঠে। বাচ্চাদের জন্যে সব মানুষের মনের কোণে একটা মায়া ঠিকই থাকে কিন্তু যারা আঁতকে উঠে তারা হয়ত ছোট বাচ্চাদের দ্বারা কোন না কোন ভাবে নির্যাতিত না হয় কোন না কোন ভাবে অসীম জ্বালাতনের শিকার। 'বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর' উপন্যাসের রইস উদ্দিন সাহেবেরও একই অবস্থা। ১৬ বছর বয়সে যতই তিনি মুক্তিযুদ্ধে জীবন বাজি রেখে যুদ্ধ করেন আর কোন অন্যায় দেখলে প্রতিরোধ করতে পিছপা হন না সেই অসীম সাহসী মানুষটাই আবার বাচ্চা- কাচ্চাকে ভীষণ ভয় পান। কারণ ছোটবেলা থেকে বাচ্চাদের কাছে মার খেয়ে আর বড় হয়ে বন্ধুর বাচ্চাদের দস্যিপনা দেখে ছোট বাচ্চাদের প্রতি অসীম ভয় তার মনে ঢুকে যায়। এইজন্যে তার বয়স ৪০ পাড় হলেও তিনি বিয়ে পর্যন্ত করেন নি। রইস উদ্দিন সাহেব এক অফিসে চাকরি করেন। তার সাথে থাকে তার এককালের সহযোদ্ধা মহা অলস মতলুব আলী। রইস উদ্দিন যতই বাচ্চাদের থেকে দূরে নিঝঞ্জাট থাকতে চান কিন্তু বিধাতা বোধহয় কপালে সেই সুখ তাকে দিলেন না। কফিল উদ্দিন নামক এক লোকের থেকে ভুল করে আসা চিঠি রইস উদ্দিনের ঘরে নিয়ে আসে আপাত মায়াময় কিন্তু মহা ধড়িবাজ মেয়ে শিউলি। রইস উদ্দিন তাকে রাখতে আপত্তি করলেও ঘটনার প্রেক্ষিতে তাকে রাখতে হয়। শিউলির পাশাপাশি রইস উদ্দিনের সংসারে আস্তে আস্তে ঢুকতে থাকে পকেটমার বল্টু যাকে শিউলি জনতার হাতে পিটুনি খাওয়া থেকে বাঁচিয়েছিল আরো আসে মহা ধুরন্দর, ভেন্ট্রিলোকুইস্ট জানা ছেলে খোকন। এই ৫ জন নিয়ে রইস উদ্দিনের সংসার হেসে- খেলেই চলতে থাকে। এর মধ্যে তাদের তিনজনকে স্কুলে ভর্তি করানোও হয়। হেসে- খেলে দিন কাটলেও একদিন শিউলি দেখে ফেলে কফিল উদ্দিন আর ফোরকান আলী এক বাচ্চাকে নিয়ে নার্সিংহোমে যাচ্ছে কারণ শিউলি জানে এরা দুইজন কিডনি ব্যাপারী আর এর আগেও শিউলির কিডনি বিক্রির চেষ্টা তারা করেছিল। শিউলি বল্টু আর খোকনের সহযোগিতায় বাচ্চাটাকে দুই শয়তানের হাত থেকে উদ্ধার করে বাসায় আনে। রইস উদ্দিন সব ঘটনা জানার পড়ে নার্সিংহোমে যায় শয়তানদের ধরতে কিন্তু শিউলিরা গিয়ে দেখতে পায় রইস উদ্দিনকে বাঁধা অবস্থায়। অনেক ঘটনার পড়ে তারা উদ্ধার পায়। গল্প মনে হয় অনেক বলে ফেললাম। এইটুকুই থাক বাকী টুইস্ট আর ঘটনাটুকু পাঠক না হয় নিজেই পড়ে স্বাদ গ্রহণ করবেন। অনেকদিন পড়ে জাফর স্যারের আগেকার লিখা বইগুলো পড়তে পড়তে কেমন একটা অনাবিল ভালোলাগা আর ভাবালুতায় মনটা ভরে যাচ্ছে। পড়ছি আর ভাবছি স্যারের এই শিশুতোষ উপন্যাসগুলো কত উপাদেয়। এই এক উপন্যাসে রয়েছে একজন নিঃসঙ্গ মানুষের বাচ্চাদের প্রতি ভালো লাগার কাহিনী, আছে রক্তের সর্ম্পক না থেকেও কিভাবে ভাই- বোনের সর্ম্পক গঠন হয়, আছে হাসি, আছে কান্না। মোটকথা পাঠক বইটা পড়লে সবকিছুর স্বাদ পাবেন। #বইয়ের_নাম : বাচ্চা ভয়ংকর কাচ্চা ভয়ংকর লেখক : মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রকাশক : অনুপম
Childrens-Book
2
ছোটবেলায় একুশে টিভিতে সন্ধ্যা সাড়ে ৬ টার দিকে একটা কার্টুন দেখাতো। কার্টুনের নাম "আলাদিন"। তার একটা জাদুর গালিচা ছিল, যেটা দিয়ে সে আরবের প্রতিটা কোনায় কোনায় ঘুরে বেড়াতো। আর একটা প্রদীপ ছিল। যেটায় ঘষা দিলে ধোঁয়ার আকারে এক দৈত্য এসে হাজির হত আলাদিনের হুকুম তামিলের অপেক্ষায়। আলাদিন দৈত্যকে যে আদেশ দিতো, দৈত্য তাই পালন করতো। আলাদিনের মূল কাহিনীটা আমার পড়া হয়নি (বইয়ের কথা বলছি) । তবে যতদূর জানি, এই দৈত্যের পৃথিবীর কোন কিছুর প্রতিই কোন চাহিদা ছিল না। তার শুধু চাই কাজ। আলাদিন তাই সারাক্ষন নাকি দৈত্যকে বিভিন্ন কাজ দিয়ে রাখতো। একবার বলতো, যাও পাহাড় ভাঙ্গো। দৈত্য নিমিষে পাহাড় ভেঙ্গে আসতো। আবার বলতো সেখানে এবার রাজপ্রাসাদ বানাও, দৈত্য মূহুর্তেই সেখানে রাজপ্রাসাদ বানিয়ে ফেলতো। এরকম করে পাড় হলো বহুদিন।এমন করতে করতে আলাদিন ব্যাপক দুশ্চিন্তায় পড়ে গেল। একটি সময়ে আলাদিন দৈত্যকে আর কাজ দিতে পারছিল না। শেষে সে দৈত্য কাজ দিতে না পারলে আলাদিনকেই মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে বসলো। এ বইটিতে মূল আলোচনা হয়েছে মানুষের মন নিয়ে। এ বইটায় যে জিনিসটি মূলত বোঝানো হয়েছে সেটি হলো, মানুষের মনও আলাদিনের সে দৈত্যের মতই। তার চাই শুধু কাজ। আপনি যখন এই রিভিউটি পড়ছেন, তখন আপনার মন সেটায় মনযোগ দিচ্ছে। আপনি যদি এখন এই রিভিউটি পড়া বাদ দিয়ে ফেসবুক থেকে লগ আউট করে চুপচাপ বসে থাকেন, তখনও সে কিছু না কিছু ভাববে। হয়তো সে ভাববে "আচ্ছা, আজকে শীত এত বেশী পড়লো কেন?" । অথবা ভাববে "অমুক বইটার অমুক চরিত্রটা এই কাজটা কেন করলো? ওই কাজটা কি করতে পারতো না? "। কিছু না কিছু সে ভাববেই ভাববে! আবার যদি ঘুমিয়েও যান, তবে মন সেখানেও সজাগ থাকে। সেজন্যেই আমরা স্বপ্ন দেখি, ঘুমের মধ্যে কথা বলি। রাতে প্রায় ১৩ বারের মত এপাশ থেকে ওপাশ ফিরি। মোটকথা এই মন নামক দৈত্যটিকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত আপনি থামাতে পারবেন না। সে কিছু না কিছু করবেই। আপনি যদি ভাল কোন কাজ দিয়ে তাকে ব্যস্ত না রাখেন, তবে সে পরিবেশ দ্বারা প্রভাবিত হয়ে কাজ করতে শুরু করবে, এখন সেটি হোক ইতিবাচক, কিংবা নেতিবাচক। মনের এই লাগামটা পৃথিবীর সব মানুষ টেনে ধরতে জানেনা। যারা এই লাগামটি টেনে ধরতে জেনেছে, তারাই আইন্সটাইন হয়েছে, তারাই নিউটন হয়েছে, তারাই হয়েছে গৌতম বুদ্ধের মত প্রজ্ঞাবান, কিংবা কেউ হয়েছে লালনের মত দেহতত্বের কারিগর, তারাই হয়েছে হুমায়ূন আহমেদ, শীর্ষেন্দু কিংবা শরৎচন্দ্রের মত বড় বড় নক্ষত্র। আর যারা লাগাম টেনে ধরতে জানেনি, তারা হারিয়ে গিয়েছে। আলাদিনের দৈত্য যেমন কাজ না পেয়ে আলাদিনকেই হত্যা করার হুমকি দিয়েছিল। ঠিক তেমনি এই মন নামক দৈত্যের লাগাম টেনে ধরতে না জানার জন্যেই তারা নিশ্চিহ্ন হয়েছে। এরকম নিশ্চিহ্ন হওয়া মানুষের সংখ্যা পৃথিবীতে কম নয়... এ বইটির আগাগোড়াই আলোচনা করা হয়েছে এই মনকে নিয়ন্ত্রন করা সম্পর্কে। একজন মানুষ যে কি সাংঘাতিক পরিমান সৃজনশীল ক্ষমতা নিয়ে জন্মায়, সেটি যদি মানুষ জানতো তবে সে নিজেকে অনেক অনেক বেশী সম্মান করতো। সেটি এ বইটিতে বার বার উঠে এসেছে। মানুষ তার "নিজেকে" চেনাতে মূলত এ বই। বইটি মূলত দু ভাগে বিভক্ত। প্রথম ১ থেকে ২৩ অধ্যায় পর্যন্ত একবার পড়ে গেলেই এতটুকু নিসঃন্দেহে বলা যায় যে কারো নিজের সম্পর্কে ধারনায় বিরাট পরিবর্তন আসবে। শেষে আরো ৫ টি অধ্যায় রয়েছে, তবে সেগুলো আগে পড়লে ক্ষতি হবার সম্ভাবনা হয়েছে। সেখানে যাওয়া যাবে, তবে ১ থেকে ২৩ অধ্যায়ের নির্দেশনাবলী পুরোপুরি পালন করার পর। চাইলে যে কেউ বইটি সংগ্রহে রাখতে পারেন... সংগ্রহে রাখার মত বই...
Motivational
6
মানুষ অদম্য। অপরাজেয়। শারীরিক প্রতিবন্ধকতাও তাঁকে নিরস্ত্র করতে পারে না। অর্থনৈতিক বাধা, সামাজিক বাধা, প্রাকৃতিক বাধা জয় করেই মানুষ এগুতে থাকে। আমাদের প্রত্যেকেরই আছে নিজস্ব বাধা পেরোনোর গল্প। তেমনি আমাদের চারপাশে আছে এমন মানুষ যাদের বাধা পেরোনোর গল্পটা সত্যিই অনন্য। অসাধারণ আর দারুণ উজ্জীবক প্রেরণাদায়ী। লেখকের ভাষায়- আমরা এসব বাধা পেরিয়ে এগিয়ে যাওয়া বিজয়ীদের কথা বলি, শুনি, শোনাই। আসলে নিজেকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রেরণা দেই। রংপুরের পায়রাবন্দের ছোট্ট বালিকাটি বাড়িতে বাংলা পড়া ছিল পাপ, আর ইংরেজি পড়া ছিল মহাপাপ। তবু রাতের অন্ধকারে সবাই ঘুমিয়ে পরলে সে মোমবাতির মৃদু আলোয় লেখাপড়া করতো। কী সুন্দর বাংলা শিখল সে, কী সুন্দর ইংরেজী! তার সুলতানাস ড্রিম বইটি পড়লে আজও আমরা অভিভূত হই। আবার নাটোরের মহরম আলী হুইলচেয়ার নিয়ে বেড়িয়ে পরেছেন পৃথিবীর পথে, নাটোরেই আবার গড়ে তুলেছেন ‘ইউনাইটেড অ্যাকশন’ নামের সংস্থা! এমন অজানা অনেকের জীবনের বাধা পেরোনোর গল্প নিয়ে লিখা “জ্বলে উঠুন আপন শক্তিতে”। নিজের জীবনের বাধা পেরনোর সংগ্রামে উজ্জিবনি শক্তি হয়ে অনুপ্রেরণার পাথেয় হলে হতে পারে লেখকের এই চমৎকার সন্নিবেশ। আজই আপনার সংগ্রহশালায় যুক্ত করুন “জ্বলে উঠুন আপন শক্তিতে”....
Motivational
6
Well informative.
Political
3
‘ইসলামঃ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস’ ক্যারেন আর্মস্ট্রং এর লেখা। ক্যারেন আর্মস্ট্রং ১৯৬৬ সালে রোমান ক্যাথলিক নান হিসেবে সাত বছর অতিবাহিত করে অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি হতে ডিগ্রি গ্রহন করেন এবং আধুনিক সাহিত্য বিষয়ে শিক্ষাদান করেন । তিনি আর্মস্ট্রং এ্যাসোসিয়েশন অফ মুসলিম সোশ্যাল সায়েন্স এর একজন সন্মানিত সদস্য । ইসলামঃ সংক্ষিপ্ত ইতিহাস বইটি তিনি ইসলাম সম্বন্ধে মানুষের ভুল ধারনা দূর করার উদ্দেশ্যে লিখেছেন । তার লেখা এই বইটি বাংলাতে অনুবাদ করে প্রকাশ করেন শওকত হোসেন । বইটি ২০০৪ সালে সন্দেশ প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় এবং বইটির প্রকাশক লুতফর রহমান চৌধুরী । প্রচ্ছদ করেছেন ধ্রুব এষ । হজরত মুহাম্মদ (সাঃ) ৬১০ খ্রিষ্টাব্দ তে নবুওয়াত প্রাপ্ত হন । তার জন্মের সময়ে আরব সমাজের অবস্থা ছিলো প্রচন্ড শোচনীয় । ওই সময় কে আইয়ামে জাহেলিয়াত বা অজ্ঞতার যুগ বলা হত। সব সময় ই হানাহানি মারামারি ও সকল প্রকার পাপাচারে লিপ্ত ছিলো গোটা সমাজ । তখন তিনি সকল কে আলোর পথ দেখাতে শুরু করেন । তার আলোর পথ দেখানো কাজ টি সহজ ছিলো না । প্রথমে কিছু কিছু মানুষ তার আহ্বানে সাড়া দেয় । এরপর থেকে ইসলাম প্রচার হয়ে আজ এই পর্যায়ে । ইসলামের সূচনা লগ্ন থেকেই ইসলাম এর নামে অনেক দোষ ধরার প্রবনতা কেন যেনো পরিলক্ষিত হয়ে আসছে । । আধুনিক বিশ্বের প্রেক্ষাপটে বইটি লিখেছেন লেখক যা পাঠক দের ইসলাম কে বুঝতে সুবিধা হবে এবং পাশাপাশি ইসলামের নামে যে সকল অপকর্ম হচ্ছে সেই ব্যাপারে ইসলামের অবস্থান সকলের কাছেই পরিষ্কার হয়ে যাবে । শুধুমাত্র ইসলাম ধর্মের অনুসারীদেরই নয়, বইটি সকলেরই পড়া উচিত । ইসলামের ইতিহাস থেকে শুরু করে সকল কিছু জানার পাশাপাশি ইসলাম সম্বন্ধে সকল ভুল ধারনা দূর করা সম্ভব হয়েছে বইটি তে ।
War
5
নামঃ ষোল নম্বর ফটিক ঘোষ লেখকঃ শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় ধরনঃ কিশোর উপন্যাস (অদ্ভুতুড়ে সিরিজ) প্রকাশনীঃ আনন্দ পাবলিশার্স পৃষ্ঠাঃ ৭৮ মূল্যঃ ১৮০৳ কাহিনীঃ দোগেছে বঙ্গসুন্দরি আর তার স্বামী নটবর সাহেব থাকেন। একমাত্র ভাইপো ফটিক কে নিমন্ত্রন জানালেন তিনি! তো ফটিক সাহেব আর তার প্রাণের বন্ধু নিতাই চলল , দোগেছে পিসির বাড়ি। কিন্তু দোগেছের কথা শুনে লোকের নাক সিটকানো ভাব দেখে দুই বন্ধু বেশ ফাঁপরে পড়ল। এর মধ্যে সাহায্যকারী হিসেবে উদয় হল “মহাদেব সাহা”! দোগেছে চিনিয়ে দিতে সাহায্য করল। কিন্তু সমস্যা হয়ে গেল বেশ কয়েকটা। এক, একে ফটিক তার এই পিসি কে কস্মিনকালেও দেখেনি, দেখে চিনতে যে পারবে সেটার সম্ভাবনা কম! দুই, পিসির দেয়া চিঠি কেউ একজন মেরে দিয়েছে।সেই চিঠি পিসির লেখা ছিল, যেটা কিনা প্রমাণ করত যে, সেই আসল ফটিক! নানা ঘাট-জঙ্গল, বাঁধা-বিপত্তি পেরিয়ে ফটিক পিসির বাড়ি পৌঁছে দেখে সে “ফটিক নাম্বার ষোল” এর আগে পনের জন নিজেদের ফটিক বলে দাবী করে গেছে। এখন “ষোল নাম্বার ফটিক” সাহেবের নিজেকে প্রমাণ করা প্রয়োজন। কিন্তু কিভাবে করবে সে?? পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ অদ্ভুতুড়ে সিরিজের অন্যান্য গল্পের মত এটাও আমার বেশ প্রিয়। বেশ থ্রিলিং আর গোয়েন্দার স্বাদ আছে। সাথে হাসির খোরাক ও না পড়ে থাকলে আজই পড়ে ফেলুন। রেটিনঃ ৫/৫
Childrens-Book
2
সান জু (খ্রিস্টপূর্ব ৫৪৪-৪৯৬), যিনি সুনজু বা সুনজি নামেও পরিচিত, ছিলেন চীনের যুদ্ধনায়ক, কৌশলী ও দার্শনিক। তার লেখা ‘দি আর্ট অব ওয়ার’ সামরিক রণকৌশলের নির্দেশিকা হিসেবে সেই প্রাচীনকালেই স্বীকৃত। যদিও সমালোচকদের ধারণা ছিল, প্রযুক্তির প্রসার ও সমরাস্ত্রের আধুনিকায়নের জোয়ারে সান জুর প্রণীত কৌশল মলিন হয়ে যাবে; বাস্তবে তা হয়নি। বরং এখনো বিশ্বের মিলিটারি স্কুলগুলোয় যুদ্ধের কলাকৌশল পড়াতে গিয়ে সান জুর দি আর্ট অব ওয়ারকে মৌলভিত্তি হিসেবে বিবেচনা করা হয়। কালের বিবর্তনে যুদ্ধের প্রস্তুতি, অভিযান ও আক্রমণের সরঞ্জাম পরিবর্তন হলেও যুদ্ধের মূল কৌশল এখনো সান জুর বইটির ওপর নির্মিত। আড়াই হাজার বছর আগে লেখা মাত্র সাত হাজার শব্দের বইটি এমনই শক্তিশালী যে, এর প্রয়োগ সামরিক ছাউনি পেরিয়ে চলে গেছে বিজনেস স্কুলের ক্লাসে, করপোরেটের বোর্ডরুমে এমনকি খেলার মাঠেও! ব্যবসা প্রশাসনের পড়ালেখার কথাই ধরা যাক। স্ট্র্যাটেজিক মার্কেটিং, করপোরেট স্ট্র্যাটেজি ম্যানেজমেন্ট, কম্পিটিটিভ অ্যানালাইসিস; সর্বোপরি যত বিষয়ে প্রতিপক্ষের সঙ্গে প্রতিযোগিতার মুখোমুখি হতে হবে, টিকে থাকতে হবে নানামুখী আক্রমণে, সেখানে সান জুর রণকৌশলগুলোই বারবার অব্যর্থ ও পরীক্ষিত অস্ত্র হিসেবে স্বীকৃতি পায়। যুদ্ধের কলাকৌশলের পাঁচটি মৌলিক উপাদান হিসেবে নৈতিক অঙ্গীকার, জলবায়ু ও আবহাওয়ার অবস্থা, ভূ-প্রাকৃতিক অবস্থা ও অবস্থান, নেতৃত্ব এবং কৌশল ও শৃঙ্ক্ষলার কথা উল্লেখ করেছেন সান জু। ব্যবসায় শিক্ষার প্রাথমিক বইগুলোও নতুন ব্যবসা শুরু বা বাজারে নতুন পণ্য আনার ক্ষেত্রে প্রথম লক্ষ্য উদ্দেশ্য নির্ধারণ, বাজার পরিস্থিতির পর্যালোচনা বিশ্লেষণ, উদ্যোক্তার নেতৃত্ব এবং যথাযথ স্বল্প ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হয়। আবার কৌশলগত আক্রমণ নির্ধারণে সান জু যখন বলেন, ‘নিজস্ব শান্তি অক্ষত রেখেই শত্রুরাজ্য দখল করা সম্ভব’ কিংবা ‘যদি শত্রু সমান শক্তিমান হয়, তাহলে যুদ্ধ শ্রেয়’, এর প্রয়োগ খুব সহজেই কম্পিটিটিভ মার্কেট অ্যানালাইসিস বইতে দেখা যায়; যেখানে মার্কেট লিডারের কৌশল হিসেবে লেখা হয়েছে রক্ষণাত্মক কৌশল অবলম্বন করেও নিজের অবস্থান সুরক্ষা করা যায়। পাশাপাশি মার্কেট চ্যালেঞ্জারের জন্য বলা হয়েছে, যেসব কোম্পানির মার্কেট শেয়ার মার্কেট সমপর্যায়ের, কেবল ওইসব কোম্পানিকেই আক্রমণ করা যাবে। প্রসঙ্গতঃ দুই মার্কেটিং গুরু আল রাইজ এবং জ্যাক ট্রাউটের কথা স্মরণ করা যেতে পারে। মার্কেটিংয়ের প্রায়োগিক দিক নিয়ে সাড়া জাগানো বেশকিছু বই লিখেছেন এ দুজন। তাদের মতে, বিশ্বের সেরা ‘মার্কেটিং’ বইটি কোনো হার্ভার্ড বা ক্যামব্রিজ প্রফেসরের লেখা নয়, বরং মার্কেটিং বিষয়ে সেরা বইটি লিখেছেন একজন আর্মি অফিসার। আশ্চর্য হওয়ার মতোই ব্যাপার! ‘পজিশনিং দ্য ব্যাটেল ফর ইউর মাইন্ড’ বইটি তারা উত্সর্গ করেছেন সেই আর্মি অফিসারকে, যার নাম কার্ল ভন ক্লজউইটজ। ১৮৩২ সালে প্রকাশিত ক্লজউইটজের লেখা ‘অন ওয়ার’ বইটি মূলত সামরিক যুদ্ধের কলাকৌশল বিষয়ক বিশ্লেষণী প্রয়াস। রাইজ ও ট্রাউট তাদের চমত্কার লেখনীতে তুলে ধরেন কীভাবে ক্লজউইটজ নির্দেশিত ভূমি দখলের জন্য এক দেশ বনাম অন্য দেশের যুদ্ধ কৌশল একুশ শতকে এসে মার্কেটিংয়ের বাজার দখলের জন্য এক কোম্পানি বনাম অন্য কোম্পানির প্রতিযোগিতার মূলমন্ত্র হয়ে ওঠে। ক্লজউইটজের বইটিকে সান জুর বইয়ের পাশাপাশি রেখে বিশ্লেষণ করা যায়, কিন্তু তুলনা করা যায় না। কারণ সান জুর বক্তব্যগুলো অনেক সংক্ষিপ্ত, কিন্তু গভীর ও একনিষ্ঠ পাঠের মনোযোগ দাবি করে। ঠিক এ কারণেই দি আর্ট অব ওয়ার বিশ্বের প্রায় চল্লিশটি ভাষায় অনূদিত হয়েছে। প্রায়োগিক ক্ষেত্রে গ্রহণযোগ্যতা পেয়েছে জ্ঞান-বিজ্ঞানের নানা শাখা-প্রশাখায়। ব্যবসা প্রশাসনের বিভিন্ন বিষয়ে সেগমেন্টেশন, টার্গেটিং, পজিশনিং, কম্পিটিটিভ অ্যাডভান্টেজ, কস্ট বেনিফিট অ্যানালাইসিস, ইন্টারন্যাল-এক্সটারনাল অ্যানালাইসিস প্রভৃতি ধারণা মূলত সান জুর বইটি থেকেই ধার করে নেয়া। পরিকল্পনা প্রণয়ন, রণ প্রস্তুতি, কৌশলগত আক্রমণ, মনোভঙ্গি, সামর্থ্য, দুর্বলতা ও শক্তিমত্তা, গুপ্তচরদের ব্যবহারসহ মোট ১৩টি বিষয়ে লেখা হয়েছে বইটিতে। যুদ্ধ কেবল ভূমি দখলের সংঘাত নয়, বাজার দখলের প্রতিযোগিতাও এক রকম যুদ্ধ। খেলার মাঠে জয়লাভও যুদ্ধের প্রতিচ্ছবি, সেখানেও কৌশল নির্ধারণে ব্যবহূত হয়েছে দি আর্ট অব ওয়ার। ১৯৯৪ সালের ফুটবল বিশ্বকাপ জয়ী ব্রাজিল দল এবং ২০০৩ সালে ক্রিকেট বিশ্বকাপ জয়ী অস্ট্রেলিয়া দল তাদের সাফল্যের গোপন রহস্য হিসেবে সান জুর কলাকৌশলকেই কৃতিত্ব দিয়েছে। দুঃখজনক হলেও সত্য, বাংলাদেশের বিজনেস স্কুলগুলোয় এখনো দি আর্ট অব ওয়ারকে সম্পূরক বা পরিপূরক বই হিসেবে যথাযথ মূল্যায়ন করা হয় না। অথচ বিজনেস গ্র্যাজুয়েটরা ক্রমবর্ধমান প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হচ্ছে প্রতিদিন। কর্মক্ষেত্রেও সিদ্ধান্ত নিতে হচ্ছে কীভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় টিকিয়ে রাখা যাবে নিজের কোম্পানির ব্র্যান্ডকে। এমন শূন্যতার মাঝে সান জুর বইটির বাংলা অনুবাদ আগ্রহী শিক্ষার্থী পাঠকদের জানার তৃষ্ণা মেটাবে কেবল তা-ই নয়, বরং ভাবনার নতুন দুয়ার খুলে দেবে। একুশ শতকের দ্বিতীয় দশকের মাঝামাঝি এসে ইন্টারনেট ই-কমার্স ও ওরিয়ন ক্যাপসুলের সাম্রাজ্যে দি আর্ট অব ওয়ার বাংলায় অনুবাদ কিংবা পাঠেরইবা কতটুকু প্রয়োজন? উত্তরে বইটির প্রকাশক প্রাসঙ্গিক কথায় লিখেছেন, বর্তমানের তীব্র প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বে টিকে থাকতে কৌশল প্রয়োগ ও বাস্তবায়নে এখনো সান জুর নির্দেশনাগুলো অন্যন্য এবং প্রাসঙ্গিক
War
5
‘বিশ্বের সেরা রহস্য উপন্যাসঃ ৮ মার্ডার প্ল্যান সিক্স’’ বইটি বিশ্বের সেরা রহস্য উপন্যাস সিরিজ এর আট নম্বর বই । মুল বইটির লেখক জন বিংহ্যাম । ১৯০৮ সালে জন্মগ্রহন করা জন বিংহ্যাম আধুনিক রহস্যসাহিত্যের অবিস্মরনীয় একটি নাম । যুদ্ধের সময়ে তিনি সেনাবাহিনীতে যোগ দেন এবং গোয়েন্দা বাহিনীতে কাজ করেন । এই গোয়েন্দা বাহিনীতে কাজ করার সময়ে রহস্য ও গোয়েন্দা কাহিনী লেখার হাতে খড়ি হয় । নালন্দা অনুবাদ সেল এর অনুবাদে এই সিরিজে এসেছে অসাধারন অসাধারন আন্তর্জাতিক মানের রহস্য উপন্যাস যা অত্যান্ত জনপ্রিয় হয়েছিল এবং পাঠক সমাজে আলোড়ন তুলেছিল । অসাধারন এ সিরিজের বইগুলো তে পাঠক পাবেন প্রতিটি উপন্যাসেই রোমাঞ্চকর অভিজ্ঞতা । রোমাঞ্চোপন্যাস এর পাঠক দের দেখে এই সিরিজ টি বের করেছে নালন্দা অনুবাদ সেল । বিশ্বের সেরা রহস্য উপন্যাস সিরিজের অসাধারন রোমাঞ্চকর এ বইটি অনুবাদ করে প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালে । বইটি প্রকাশিত হয় নালন্দা প্রকাশনী থেকে এবং এর প্রকাশক রেদওয়ানুর রহমান জুয়েল । বইটি সম্পাদনায় আছেন জাকির শামীম এবং প্রচ্ছদ ডিজাইন করেছেন জাহাঙ্গীর আলম । চমক এবং আঙ্গিকের অনন্যতায় মার্ডার প্লান সিক্স এর কোনো তুলনা নেই । এই কাহিনীর প্রধান চরিত্র ভিক্টর গোলানজ সত্যি সত্যিই মার্ডার প্ল্যান সিক্স এর প্রথম প্রকাশক । অসাধারন এ বইটি পাঠককে দিবে টান টান উত্তেজনাকর এক অভিজ্ঞতা । জন বিংহ্যাম এর সাহিত্যের সবথেকে বড় বৈশিষ্ট তিনি তার ভাষার জাদু দিয়ে যে কোন চরিত্রকে একদম জীবন্ত ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পারেন যার জন্য পাঠক তার বই পড়ার সময় বইতে ডুবে যেতে বাধ্য ।
Thriller
1
এ বইটি জাফর ইকবার স্যারেয় অন্য সাইন্স ফিকশনের মতো নয় ।এটাকে একেবারে সাইন্স ফিকশন বলা ঠিক হবে কি না জানি না ।তবে যাই হোক না কেন, বইটি কিন্তু মজার ।এ বইটিতে মোটামুটি পাঁচটি গল্প রয়েছে ।বইয়ের প্রথমেই যে গল্পটি রয়েছে তার শিরোনামই 'বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা' ।এ গল্পটিতে বিজ্ঞানী অনিক লুম্বার নামকরণের যে ইতিহাস বর্ণিত হয়েছে ,তা সবচেয়ে ভালো লেগেছে আমার ।এর পরেই যে গল্পটি রয়েছে তার নাম হচ্ছে 'মশা ' ।পুরো গল্পটির কাহিনীই আবর্তিত হয়েছে বিজ্ঞানী অনিক লুম্বার এক মজার মশার অদ্ভুত প্রজেক্ট নিয়ে ।যেন তেন মশার প্রজেক্ট নয় ,কোটি কোটি মশা কারবার ।বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা নাকি এদেরকে এমনভাবে গড়ে তুলবেন যাতে এরা আর মানুষের রক্ত না খায় ।অনেক গবেষণার পর তিনি সফলও হন ।কিন্তু তারপর... ।এ গল্পের পরেই রয়েছে 'ইঁদুর ' শিরোনামের গল্পটির অবস্থান ।গল্পটিতে অনিক লুম্বার বাড়ির পাশেই এক বাড়িতে ইঁদুরের খুব উত্‍পাত ।এই উত্‍পাত দূর করার দায়িত্ব নিতে হয়েছিন বিজ্ঞানী অনিক লুম্বাকেই ।সে একটি যন্ত্র সেট করে দেয় ।কিন্তু ঐ বাড়িতেই যে গুন্ডা থাকতো তারা এটি নিয়ে যায় । এটিতে আসলে লাগানো ছিল ভিডিও ট্রান্সমিটার ।ফলে ঐ গুন্ডারা যে অপকর্ম করে তার সব খবর পেয়ে যায় অনিক লুম্বা ।আর এই সব তথ্য প্রমাণ দিয়ে দেয় পুলিশকে । পরে অবশ্য অনিক লুম্বা ঐ বাড়িতে ইঁদুর তাড়ানোর জন্য শব্দোত্তর তরঙ্গের যন্ত্র সেট করে দিয়েছিল ।আর সব ইঁদুর... ।এরপর রয়েছে 'কবি কিংকর চৌধুরী' ও 'জলকন্যা' নামের অনেক মজার গল্প দুইটি । বইটির গল্পগুলো মজার পাশাপাশি বিজ্ঞানের অনেক তথ্য সম্পর্কে জ্ঞাত করছে আমাকে ।এই বইটিতে জাফর ইকবাল স্যারের নিপুণ লিখন কৌশল ও ভিন্ন ধারার প্রকাশভঙ্গি সত্যিই প্রশংসার দাবি রাখে ।
Science-Fiction
4
’৮০ দশকের নির্বাচিত পাঁচটি উপন্যাস’ বইটি বিংশ শতাব্দীর বাঙালী জনপ্রিয় কথাসাহিত্যিকদের মাঝে অন্যতম হুমায়ূন আহমেদ এর লেখা কয়েকটি উপন্যাস একত্রিত করে সম্পাদন করা একটি বই । লেখক হুমায়ূন আহমেদ বাংলাদেশের লেখক দের মাঝে সবচেয়ে জনপ্রিয় লেখক । তিনি কিছু বিখ্যাত উপন্যাস চরিত্রের স্রষ্টা । তার সৃষ্ট চরিত্র হিমু, মিসির আলী, শুভ্র ইত্যাদি পাঠক দের মাঝে অত্যান্ত জনপ্রিয় । লেখক হুমায়ূন আহমেদ ১৯৪৮ সালের ১৩ নভেম্বর নেত্রকোনা জেলায় জন্মগ্রহন করেন । তিনি একাধারে একজন লেখক , নাট্যকার গীতিকার ছোটগল্পকার । তিনি তার কর্মক্ষেত্রের সবখানেই তার প্রতিভার ছাপ রেখে গেছেন । তিনি তার জীবনে তিন শতাধিক বই লিখেছেন । তার অনেক গ্রন্থই অন্য ভাষায় ছাপা হয়েছে । তার সকল গ্রন্থেই তার প্রতিভা বোঝা যায় । ৮০ দশকের নির্বাচিত পাঁচটি উপন্যাস বইটি প্রকাশিত হয় ২০০২ সালের ডিসেম্বর মাসে অন্যপ্রকাশ প্রকাশনী থেকে । বইটির প্রকাশক মাজহারুল ইসলাম । বইটির প্রচ্ছদ করেছেন মাসুম রহমান । বইটি তে হুমায়ূন আহমেদের ৮০ দশকে লেখা ৫ টি উপন্যাস একত্রিত করে প্রকাশ করা হয়েছে । তন্মধ্যে রয়েছে আমার আছে জল, বাসর , আকাশজোড়া প্রেম , সাজঘর ও জনম জনম , যা অত্যান্ত জনপ্রিয় কিছু উপন্যাস । প্রকাশক হুমায়ূন আহমেদের সাহিত্য জীবনের ৩০ বছর পুর্তি উপলক্ষে তার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে এই রচনামালা বইটি প্রকাশ করেছেন । তার লেখা উপন্যাস গুলো বিশেষ করে আমাদের দেশের যুবসমাজ কে গভীরভাবে উদ্বেলিত করেছে । যারা হুমায়ূন আহমেদ এর বই পছন্দ করেন, তারা বইটি পছন্দ করবেন কারন অনেকগুলো উপন্যাস একত্রিত করে প্রকাশ করা হয়েছে । জনপ্রিয় এর কথাসাহিত্যিক ২০১২ সালের ১৯ জুলাই পরলোকগমন করেন ।
Fiction
0
পিশাচিনী মুহাম্মদ জাফর ইকবালের একটি ভুতের ছোটগল্পের সংকলন।৯টি গল্প নিয়ে বইটি লেখা হয়েছে।তালিকাটা দিলামঃ ১।পিশাচিনী ২।রহমত চাচার একরাত ৩।সহযাত্রী ৪।বন্ধ ঘর ৫।গাড়ি ৬।মুগাবালী ৭।নেকড়ে ৮।সুতোরন্তু ৯।মুতুয়াল পির এর মধ্যে সবকটাতেই যে ভয়ের অনুভূতি আছে বা সবকটি গল্পই যে ভালো লাগবে এমন না।পিশাচিনী টা মূলত কালোজাদু নিয়ে লেখা।এই গল্পটা সবারই ভালো লাগবে আশা করি।রহমত চাচার একরাত মূলত গ্রামের পটভূমিতে লেখা।একটি লাশকাটা ঘরে কিছু ভয়ার্ত অনুভূতির কথা নিয়ে গল্পটি লেখা।সহযাত্রী,বন্ধ ঘর এভারেজ লেগেছে।মুতুয়াল পির টা ভালো লাগে নি।গাড়ি গল্পটা তে বিদেশী কাহিনীর স্বাদ পাওয়া যাবে।সব মিলিয়ে বলতে গেলে কিছু সময়ের জন্য রহস্যের মধ্যে ডুবে থাকতে চাইলে নিঃসন্ধেহে বইটি পড়ে ফেলতে পারেন। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ এই বইয়ের একটি ভালো দিক হচ্ছে প্রতিটা গল্পই আলাদা ধরণের।একটার সাথে আরেকটার কোন মিল নেই।কোনও কোনও টাতে যেমন রয়েছে শহুরে ব্যস্ত জীবন,আবার কোনওটাতে গ্রামীণ আবহ।কোনটায় রয়েছে থ্রীল আবার কোনওটায় আছে মেডিকেলের দমবন্ধ করা রুধ্বশ্বাস কাহিনী।তা দেরি না করে পড়ে ফেলুন বইটি।
Thriller
1