summary
stringlengths
1
29.6k
genre
stringclasses
7 values
Label
int64
0
6
#BookReview বইঃ চাঁদের পাহাড় ধরনঃ অ্যাডভেঞ্চার লেখকঃ বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায় পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৭৯ প্রকাশকঃ জয় প্রকাশন ভারত বাংলার এক নিভৃত পল্লী গাঁয়ের সহজ সরল প্রাণোচ্ছ্বল ছেলে সঙ্কর । এফ.এ পাশ করা গাঁয়ের ফুটবলের নামকরা সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড, নামজাদা সাঁতারু সঙ্করের দিনগুলো কাটছিল বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে, ঘুমিয়ে আর বাঁওড়ে মাছ ধরে । এমন সময় সঙ্করের মা একদিন তাকে বলেন যে, তার বাবার শরীর ভালো নয় কাজেই সঙ্করকে একটা চাকরীর চেষ্টা করতে হবে । মায়ের কথাটা সঙ্করেকে ভাবিয়ে তুলেছে । কে তাকে চাকরি দেবে ? সে চেনেই বা কাকে ? সঙ্করদের গ্রামের এক ভদ্রলোক পাটকলে চাকরি করতেন তার বিশেষ সুপারিশে সঙ্কর পাটকলের কেরানির পদে চাকরি পায় কিন্তু সঙ্করের মন উড়ে যেতে চায় পৃথিবীর দূর, দূর দেশে শত শত দুঃসাহসিক কাজের মাঝখানে । লিভিংস্টোন, স্ট্যানলির মতো, হ্যারি, জনস্টন মার্কো পোলো, রবিনসন ক্রুসোর মতো । আসলে বাঙালী যে সৃষ্টিই হয়েছে কেরানী, স্কুলমাষ্টার, ডাক্তার বা উকিল হবার জন্য । অজ্ঞাত অঞ্চলের অজানা পথে পাড়ি দেওয়ার আশা তাদের পক্ষে নিতান্তই দুরাশা । কাজেই সঙ্কর নিজের নিয়তিকে মেনেই নিয়েছিল পাটকলের কেরানি হিসেবে । তারপর দৈববলে একদিন সঙ্কর তার স্বপ্নের দেশ আফ্রিকায় একটি রেলওয়ে কনস্ট্রাকশনের কাজ পেয়ে যায় । উগান্ডার মোম্বাসা থেকে রেলপথ গিয়েছে কিসুমু-ভিক্টোরিয়া নায়ানজা হ্রদের ধারে-- তারই একটা শাখা লাইন তৈরি হচ্ছিল আর সঙ্কর সেখানেই একটি কনস্ট্রাকশন ক্যাম্পের কেরানি ও সরকারি স্টোরকিপার হয়ে এসেছে । উগান্ডার এই অঞ্চল সিংহের রাজ্য । সিংহের লোলুপ রক্তক্ষুধায় প্রান হারায় আফ্রিকায় সঙ্করের একমাত্র বাঙালি বন্ধু তিরুমলসহ ক্যাম্পের কয়েকটি আফ্রিকান কুলি । সিংহের উপদ্রব আর বর্ষাকালের আগমনে সেখান থেকে ক্যাম্প সরিয়ে নেয় কনস্ট্রাকশন বোর্ড । এখান থেকে ৩০ মাইল দূরে একটি ছোট্ট স্টেশনের স্টেশন মাস্টারের কাজ পেয়ে জিনিসপত্র নিয়ে সঙ্কর সেখানে চলে গেল । এই স্টেশনে সেই একমাত্র কর্ম্মচারী । আফ্রিকার গহীন মরু অঞ্চলের সেই একমাত্র মানুষ। দিনে একটিমাত্র ট্রেন সেটি চলে গেলেই গহীন মরুর বুকে সঙ্করের সঙ্গী বিপদ আর ভয় । হিংস্র সিংহ আর আফ্রিকার সবচেয়ে বিষধর সাপ ব্লাক মাম্বার হাতে প্রাণ হারাতে বসেছিল সঙ্কর কিন্তু তবুও সঙ্করের কোন ভাবান্তর নেই কেননা এই জীবনই যে সঙ্কর চেয়েছিল । বিপদসংকুল মরুর বুকেও সঙ্কর রাইফেল হাতে ঘোড়ায় চেপে ঘুরে বেড়ায় যেন বিপদকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় । একদিন মরুর বুকে মুমূর্ষু অবস্থায় ডিয়াগো আলভারেজ নামের এক পর্তুগিজ প্রসপেক্টরকে খুঁজে পায় সঙ্কর যা পরবর্তীতে সঙ্করের জীবনকে আমূল পাল্টে দেয় । অসুস্থ আলভারেজকে চিকিৎসা করে সারিয়ে তুলে সঙ্কর জনমানবহীন মরুভূমিতে একজন সঙ্গী পেয়ে যায় । গল্পে গল্পে সঙ্কর জেনে ফেলে আলভারেজ একজন দক্ষ অনুসন্ধানী । আফ্রিকার মরু, অরণ্য, পাহাড়-পর্বত সবকিছুই তার নখদর্পণে । হঠাৎ করেই একরাতে আলভারেজ সঙ্করকে প্রস্তাব দেয় তার সঙ্গে হীরার খনি "মাউন্টেন অব দি মুন" এর খোঁজে যাবার জন্য । সঙ্করও কালবিলম্ব না করে আলভারেজের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় । পরদিনই চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে সঙ্কররা বেড়িয়ে পরে তাদের অভিযানে । বিপদ সংকুল অরণ্য মাড়িয়ে দুর্গম পর্বতশৃঙ্গ পেড়িয়ে সঙ্কর ও ডিয়াগো আলভারেজ এগিয়ে চলে তাদের স্বপ্নের "মাউন্টেন অব দি মুন"-এর খোঁজে । পথে আফ্রিকার আদিম উপজাতি মাসাইদের এলাকা জুলু ভিলেজে আতিথিয়তা গ্রহণ করে সঙ্কর ও আলভারেজ । গোত্র প্রধানকে তারা তাদের অনুসন্ধানী উদ্দেশ্যের কথা বলতেই তিনি তার ঘোর বিরোধীতা করে জানান যে, যারা "মাউন্টেন অব দি মুন" এর খোঁজে যায় তারা আর কখনো ফিরে আসে না । বুনিপ নামের এক অপদেবতা আছে ঐ এলাকার রক্ষি হিসেবে, বুনিপের এলাকা থেকে কেউ ফিরে আসতে পারে না । কিন্তু স্বপ্নের আস্বাদ পেতে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে নানান বিপদ সংকুল পথে দিনরাত তারা এগিয়ে যায় রত্নের খোঁজে । দিনের পর দিন মাসের পর মাস আফ্রিকার অজানা অরণ্যে চলতে চলতে ফুরিয়ে যায় তাদের রসদ সামগ্রী- খাদ্য, বন্দুকের টোটা । এভাবে একদিন তারা পৌঁছে যায় বুনিপের এলাকায় । সঙ্করের জীবনের বিপত্তি ঘটে এখানেই । সারা জীবনের হীরার খনি আবিষ্কারের স্বপ্নকে অসম্পূর্ণ রেখে বুনিপের হাতে প্রাণ হারায় ডিয়াগো আলভারেজ ।। আলভারেজকে হারিয়ে সঙ্কর গুপ্তধনের সন্ধান করা ছেড়ে দিয়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল । সেখান থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে অরণ্য পেরিয়ে রয়েছে ভয়ঙ্কর কালাহারি মরুভূমি, মরুভূমির পর চিমানিমানি পর্বত পেরোলেই দঃ রোডেসিয়া এমনটাই এক রাতে ম্যাপ দেখার সময় আলভারেজ সঙ্করকে বলেছিল । একটি বন্দুক এবং অবশিষ্ট অল্প কিছু সংখ্যক টোটা নিয়ে সঙ্কর ফিরে যাওয়ার পথ ধরল ।। শেষ পর্যন্ত সঙ্করের পরিনতি কি হয়েছিলো ?? সঙ্কর কি পেরেছিল সভ্য জগতে ফিরে যেতে ?? মরুভূমি ও পাহাড়ের পথে সঙ্করের কি হয়েছিলো, সে কি পাহাড় ও মরুভূমি পেরোতে পেরেছিল ?? এসব প্রশ্নের উত্তর "চাঁদের পাহাড়" বইটির কাছ থেকে জেনে নিবেন । ♥️📖📚
Childrens-Book
2
বেশির ভাগ বই ই আমার ভাললাগে। কিন্তু এই টাইপের বই এটাই ফার্স্ট পড়লাম। বইটার গল্প বা বর্ণনা পুরাই আলাদা। এখানে অনেক চিন্তাভাবনার ঘটনা ছিল কিন্তু আমি সে সব নিয়ে চিন্তা করার সুযোগই পায়নি। কারন আমি এটা চিন্তা করতেই ব্যাস্ত ছিলাম যে কাষ্ঠাসন, যুথযান, তঙ্কা, ধুম্রকাঠি, লৌহবর্ত্ম এসব শব্দ মানুষ পাই কোথায় থেকে। এসব শব্দ তো জীবনেও শুনিনি। আর বই এ নির্ঘণ্ট না থাকলে জীবনেও জানতে পারতাম না।
Fiction
0
মিসির আলি এখন তার ছাত্র ফারুকের শ্বশুর বাড়ি কইলাটি গ্রামে আছেন। ফারুকের মতে সেখানে অতিপ্রাকৃত, অবিশ্বাস্য ঘটনার সন্ধান পাওয়া যাবে। ফারুকের শ্বশুর তরিকুল ইসলাম একজন স্কুল শিক্ষক, ভালো মানুষ শুধু একটু বেশি কথা বলে।মিসির আলি তার জামাইয়ের শিক্ষক বলে তাকে অনেক আদর যত্ন করা হচ্ছে। আদরের পরিমাণ এতোই যে তা অত্যাচারের রূপ নিয়েছে। ফারুকের স্ত্রী আয়না। মিসির আলি কইলাটি আসার দুই দিনের মধ্যে আয়নার সাথে দেখা হয় না। আয়না মাঝে মাঝে দুই তিন দিন এক নাগাড় দরজা বন্ধ করে পড়ে থাকে, কিছু খায় না। বাইরেও বের হয় না। এটা নিয়ে তার বাবা মার মধ্যে কোন রকমের অস্থিরতা নাই, তারা বরং দিব্বি মেহবানের আদর যত্ন করছে। তারা মেহবানের যত্ন নিয়ে অস্থির । এই ঘটনায় মিসির আলির সামান্য খটকা লাগে, এমন কি হতে পারে মেয়ের এই অবস্থা দেখে তারা অভ্যস্ত। কোন বাবা মাই সন্তানের অস্বাভাবিকতায় অভ্যস্ত হতে পারেন? তৃতীয় দিন ভোরে আয়নার সাথে মিসির আলির দেখা হয়। অনেক রূপবতী সে, মিসির আলি। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিলেন আয়নার দিকে। কিন্তু সকালে নাস্তা করার সময় মিসির আলি আয়নাকে দেখে আচমকা ধাক্কা খান। একি দেখছেন তিনি একি ভ্রান্তি তাঁর সামনে। দেখার ভুল নাকি প্রকৃতির আলোছায়ার খেলা? মিসির আলি আয়নার সাথে কথা বলে জানতে পারেন তার স্বামী তাকে দেখে মাঝে মাঝে মুগ্ধ হন আবার মাঝে মাঝে হতভম্ব হন। " নদীর নাম রায়না। সে কোথাও যায় না। সমুদ্রকে পায় না। "
Fiction
0
ছোটজাতের ছোটজাত হাসিম। পিতৃপ্রদত্ত নামখানা একরকম ভুলতে বসেছে। বান্যিয়ার পুত বলে ডাকে লোকে। তার এই নামকরণের পেছনে গভীর লজ্জা আর বেদনা লুকায়িত। পূর্বপুরুষ ছিল বনেদী হিন্দু। বাপ তার ভালবেসেছিল কাজী বাড়ির মেয়ে জরিনাকে। তার টানে উদাস হল, ঘর ছাড়ল, সবশেষে ধর্ম ত্যাগ করল। নগদ অর্থ আর স্বর্ণ তুলে দিল বাড়ির কাজের লোকের হাতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জরিনাকে পাওয়া হল না। পরিবর্তে বিয়ে হল ঐ বাড়িরই দাসীর সাথে। নির্মম মানসিক পীড়ায় পার করে দিল একটা জীবন। মরা মুখটা মাও দেখতে পেল না। মুসলমানের মরা দেখা যে পাপ। হোক না নিজের ছেলে। বাবার উপর খুব ক্ষোভ জন্মে হাসিমের মনে। কি দরকার ছিল এসব করে? যন্ত্রণা তো শুধু নিজে ভোগ করল না। উত্তরাধিকার সূত্রে দিয়ে গেল হাসিমকে। আজ লোকের কাছে সে করুণার পাত্র, ঘৃণার পাত্র। দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতেই যেখানে শরীরের রক্ত পানি করতে হয় সেখানে সাধ, আহ্লাদ বা আবেগের মূল্য কোথায়? স্ত্রী সুফিয়াকে নিয়ে তার ছোট্ট পৃথিবী। চাওয়া-পাওয়ার বালাই নেই। তবে এতটুকু বেঁচে থাকাকে টেনে নিতেই সমাজ সংসারে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয়। সমাজের উঁচুতলার মানুষেরা যেন হাসিমদের কৃপা করে ধন্য করে। তারা কাজ- কর্জ না দিলে চলবে কি করে তাদের? খলু ব্যাপারী, কাদের, কানা আফজলদের তো আর খাবার নিয়ে ভাবতে হয় না। তিন চার বছরের চিকন চাল মজুদ করে সালিশ আর দাঙ্গা হাঙ্গামা করে বাড়ায় সম্পত্তির পরিধি। খলু ব্যাপারীর হাতিয়ার ভাতিজি জোহরা। তাকে দুবার বিয়ে দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছে। আর তার খোরপোষের বাহানায় জমি আদায় করে নিয়েছে পাত্রপক্ষ থেকে। এখন আবার খেলছে নতুন চাল। কাদিরও কম যায় না। আর সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে কানা অাফজল। এক সময়কার ফরমায়েশ খাটা লোকটি আজ গণ্যমান্য ব্যক্তি। তাদের সাথে সুদখোর অধরবাবুদেরও খাতির বিস্তর। ধর্মের সীমারেখা তাদের বেলায় অকেজো। ধর্মের দোহাই দিয়ে বড়মানুষেরা প্রতিনিয়ত ছোটলোকদের অবহেলা করে। তাদের পাপ- পুণ্যের হিসাব করে। হাসিম বাঁদীর ছেলে একথা তাকে ভুলতে দেয় না। বুড়ি দাদী রক্তের টানে লুকিয়ে চুরিয়ে নাতিকে দেখতে আসে। সে কেন ধর্ম কর্ম করে না এ নিয়ে মুরুব্বী গোছের লোক দু'কথা শুনিয়ে দেয়। জীবনের গঞ্জনা তাকে বিষিয়ে তোলে। এর মধ্যেই তার সাথে পরিচয় ঘটে অসাধারণ কিছু মানুষের সাথে। যাদের কাছে তার সামাজিক অবস্থান নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। জাত-ধর্ম নিয়ে কোন বাছ-বিচার নেই। ওলাওঠায় গ্রাম যখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হবার পথে তখন তারা ঘুরে ঘুরে তাদের সেবা করে। মুসলমানদের কবর দেয়। হিন্দুদের সৎকার করে। নিজেকে নতুন করে চেনে হাসিম। মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় সে মানুষ। জীবনের আলোকিত পথ কি তাকে আলিঙ্গন করবে না সে আবার অন্ধ সমাজের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাবে?
Fiction
0
ফালতু একটা বই। পয়সা নষ্ট। বাজে লেখনী। একই জিনিস বারবার কপি পেস্ট করা।
Political
3
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা। বইয়ের নামঃ আর কতদিন। প্রকাশনীঃঅনুপম প্রকাশনী। লেখকঃজহির রায়হান। প্রচ্ছদ:ধ্রুব এষ। মূল্য:৬০ টাকা। পৃষ্ঠা সংখ্যা:২৮। 'আর কতদিন' জহির রায়হানের এক বড় গল্প। উপন্যাসিকাও বলা চলে। এই উপন্যাসিকাটির মূল প্রেক্ষাপট কি তা বলা মুশকিল।লেখক লিখেছেন-মুক্তিযুদ্ধের কথা।।শুধু মুক্তিযুদ্ধও না।লিখেছেন পৃথিবীর সকল বর্বর মানুষদের দ্বারা ছোটজাতদের অন্যায়ভাবে হত্যা করার বিষয়। একসময় হিংস্র কুকুরদের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রায় ১৯ জন সকল বয়সের মানুষ আশ্রয় নেয় এক বৃদ্ধার বাড়িতে।বৃদ্ধাটিও খুঁজে বেড়াচ্ছে তার ছেলে তপুকে। অন্যদিকে তপু।সে খুঁজে বেড়াচ্ছে তার প্রেমিকা ইভাকে।সাদা চামড়ার মানুষদের অত্যাচারকে পাশ কেটে এক সময় উদ্ধার করে নেয় ইভাকে।তারা ছুটে চলে।ছুটে চলে শান্তির লক্ষে।পথে খুঁজে পায় এক ছোট ছেলে'কে। তপু আর ইভা এবং সাথে ছোট ছেলেটা ছুটে চলতে চলতে এসে পড়ে তপুদের বাড়ির সামনে। ভেতরে অবস্থানরত বাড়ির অন্য লোকেরা তপুদের দেখে তুপর ক্রুদ্ধ ভাইরা এবং তার বাবা তাদের'ই মারতে আসে এবং তাড়া করে বেড়ায়। আবারো ছুটে চলে তপু,ইভা।ছুটে চলে নির্যাতিতদের ভীড়ে।খুঁজে পেতে চায় এক টুকরো সুখ।অন্যদিকে তপুর মা, যিনি হন্যে হয়ে খুঁজছেন তপুকে সেসব সন্তানহারা মায়েদের ভীড়ে। এই নিশৃশংসতার শেষ কোথায়?জাতি,ধর্ম,বর্ণ ইত্যাদি ভেদে অত্যাচারের মাত্রার শেষ হবে কি আর? পাঠপ্রতিক্রিয়া:গল্পটি তিনবার পড়েছি। প্রেক্ষাপট বুঝতেই বেশ খানিকটা বেগ পেতে হয়েছে।জহির রায়হান যে মাস্টার স্টোরিটেলার তা তার রেখে যাওয়া লেখা পড়লেই বুঝা যায়। গল্পটি পড়ে বেশ কয়েকবার নড়েচড়ে বসবেন। "কি হচ্ছে,ক্যানো হচ্ছে।"এসব বলে বারংবার দ্বিধায় পড়ে যাবেন। রেটিং:৫/৫।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ বোতল ভূত লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃ প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ পৃষ্ঠাঃ ৬৪ মুদ্রিত মুল্যঃ ১০০৳ #রিভিউঃ “বোতল ভূত” মূলত শিশু-কিশোরদের জন্যে রচিত উপন্যাস। মজার ভৌতিক গল্প বললেও ভুল হবে না। বইটি পড়ে আমার মনে হয়েছে তা বড়দেরও আনন্দ দিতে পারে। সুতারাং বড়-ছোট সকলে পড়তে পারেন এই বইটি। উপন্যাসে হুমায়ুন আহমেদ উত্তম পুরুষে কাহিনীর বর্ণনা দিয়ে যান। একদিন ক্লাসে এগারো বছর বয়সী লেখাপড়ায়-বিমুখ হুমায়ুন আহমেদকে তার বন্ধু মুনির অবাক করে দিয়ে বলল, “এই হুমায়ুন, ভূত পুষবি?” ভূত পুষবে মানে? ভূত কি কুকুর ছানা নাকি যা চাইলে সহজে পোষা যায়? এমন প্রশ্নগুলো হুমায়ুনের মনে কৌতূহল বাড়াতে থাকে। সাথে সাথে সে রাজি হয়ে রওনা দেয় ভুতের বাচ্চা আনতে। তখন সন্ধ্যাবেলা। গাছপালায় ঢাকা জঙ্গুলে জায়গায় শেওলা-ঢাকা দো’তলা বাড়িতে তারা উপস্থিত হয়। বাড়ির নাম শান্তিনিকেতন। দরজায় কড়া নাড়তেই বেরিয়ে আসে সন্ন্যাসীর মতন চেহারার একলোক। ঠিক যেন দেখতে অবিকল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতন। পরনে আলখাল্লার মত লম্বা পোশাক। লোকটির আগে অন্য নাম ছিল, এখন অবশ্য সকলে রবিবাবু নামেই ডাকে। কি অদ্ভুত, তাই না? সেই অদ্ভুত লোকটিই ছোট্ট শিশিতে ভরে দিল ভুতের বাচ্চা। সেই ভুতের বাচ্চাকে সঙ্গে করে হুমায়ুন যখন ঘরে এলো তখন কি হল জানতে নিশ্চয় ইচ্ছে করছে? না থাক, আমি আর বলে গল্পের মজা নষ্ট করতে চাইনা। আপনারাই পড়ে ফেলুন এই ব্যতিক্রমধর্মী মজার ভৌতিক উপন্যাসটি। হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাসগুলো বরাবরই সাহিত্যরস সমৃদ্ধ ও সুখপাঠ্য। আর ছোটোদের জন্যে “বোতল ভু্ত” ক্ষেত্রে এর ব্যততায় ঘটেনি। লেখায় মূলভাব প্রকাশে লেখক ছিলেন সহজ ও সাবলীল। যা ছোটদের জন্যে একেবারে পাঠের উপযোগী। বইটির রেটিং ১০ এ ১০ দিলেও কম হয়ে যায়। আপনার বাচ্চাকে গিফট করতে বা নিজের সংগ্রহে রাখতে আজই কিনে ফেলুন। রকমারি লিঙ্কঃ https://www.rokomari.com/book/1306/বোতল-ভূত
Childrens-Book
2
পাঠকনন্দিত লেখক ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার মূলত সাইন্স ফিকশন লিখে বেশি পরিচিত, সবাই জানে যে বিজ্ঞান নিয়েই তার কাজ কারবার। কিন্তু তার লেখা এমন ছোটগল্পের সংখ্যাও কিন্তু নেহাতই কম নয় যেখানে চিরাচরিত বৈজ্ঞানিক বিশ্বাসকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আদিভৌতিক ও সাধারণ চিন্তাভাবনায় ব্যাখাতীত ঘটনার উল্লেখ ঘটে নাই। 'ও' নামক গল্পগ্রন্থে ঠিক তেমনই ৫টা গল্পের সন্নিবেশন ঘটেছে। কিন্তু স্থূল অর্থে এই বইটিকে ভূতের বই বলা একদমই ভুল হবে কেননা সরাসরি ভূত প্রেতের কথা লেখক একটিবারের জন্যেও কোন গল্পে আনেন নি। বরং তিনি তার এই গল্পগুলোর মাধ্যমে মানুষের জীবনের সেই সব ঘটনাকেই তুলে ধরতে চেয়েছেন, যার ব্যাখ্যা আমরা খুঁজে পাই না বলে সেগুলোকে প্যারানরমাল বা অস্বাভাবিক ঘটনা বলে আখ্যায়িত করে থাকি। এইসব গল্পের আরেকটি যে বিশেষত্ব তা হল, হুমায়ুন আহমেদের অনেক আদিভৌতিক গল্পে আমরা দেখেছে যে অস্বাভাবিক ঘটনাগুলোর পেছনে কোন অতি স্বাভাবিক কারণ প্রভাব ফেলেছে কিনা সে ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে; কিন্তু মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার এই গল্পগুলোতে সেই ধরণের কোন ব্যবচ্ছেদের চেষ্টা চালান নাই। ঘটনাগুলোকে সাদা চোখে যেমন দেখায়, ঠিক সেভাবেই নিজের ভাষায় উপস্থাপন করেছেন। ব্যাখ্যাতীত ব্যাপার স্যাপারের ব্যাখ্যা খুঁজে বের করার দায় নিজের দিকে টেনে নেন নাই, পাঠকের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন। বইয়ের প্রথম গল্প 'ও' যেখানে লেখক তার এক দুঃসম্পর্কের মামা, গহর মামার জবানিতে গল্পটি শুনিয়েছেন। গহর মামার যুবক বয়সের গল্প যখন তিনি পড়তেন একটি মাদরাসায়। কবিরাজি চিকিৎসার জন্যে এক বিচিত্র স্বভাবের ব্যক্তিকে তার বাড়ির লোকেরা মাদরাসায় রেখে যায়। লোকটি গহর মামা ও তার বন্ধু মতিনকে 'ও'র কথা বলে যে প্রায়ই লোকটার কাছে এসে লোকটাকে কোন একটা শাস্তি দেয়। 'ও' নাকি আবার বিভিন্ন প্রাণী এমনকি মানুষেরও রক্ত খায়। তো, সেদিন রাতে লোকটার উপর 'ও' ভর করে। তারপর গহর মামা ও তার বন্ধু মতিনের কি হয় শেষ পর্যন্ত, সেই নিয়েই কাহিনী। ফিনিশিংটা গহর মামা নিজে করেন নাই। ব্যাপারটা চেপে যেতে চেয়েছেন। লেখক তার নিজের ভাষায় যথাসম্ভব ভয়ংকর একটি সম্ভাব্য সমাপ্তির কথা তার মামাকে শুনিয়েছেন। মামা কিন্তু বলেন নাই লেখকের অনুমান ঠিক কিনা। এই জিনিসটাকে আমি বলব জাফর স্যারের একটা মাস্টার স্ট্রোক। গল্পের আমেজ বজায় রেখে তিনি নিজের মত করে গল্পের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন কিন্তু অবিশ্বাসীরা যাতে সহজেই গল্পটাকে অবিশ্বাস করে উড়িয়ে দিতে না পারে, সেজন্য আসল সত্যিটাকে চেপেও গেছেন। ফলে সবারই গল্প শেষে জানার আগ্রহ থাকবে, আসলেই শেষ অব্দি কি হয়েছিল। দ্বিতীয় গল্প 'আলমারি'। লেখক দোকান থেকে নতুন একটা আলমারি কিনে আনলেন। আলমারি কিনতে গিয়েই দোকানে এক মহিলার দেখা পান, যে অভিযোগ নিয়ে এসেছিল যে তার কিশোর বয়সী ছেলে ঐ দোকানে কাজ করত কিন্তু কয়েকদিন ধরে বাড়ি ফেরে নাই। যাইহোক, লেখক বাসায় আলমারি কিনে আনার পর থেকেই লক্ষ্য করতে লাগলেন, আলমারির ভেতর থেকে কেমন একটা শব্দ বের হচ্ছে। এক রাতে দেখা পেলেন বারো তের বছরের এক ছেলের, কিছুক্ষণ থেকেই যে অদৃশ্য হয়ে গেল। কিন্তু ছেলেটার অস্তিত্বের আলামত হিসেবে লেখক আলমারির ভেতরে খুঁজে পেলেন রক্তের চিহ্ন। তাহলে কি এবার লেখক খুঁজে বের করতে পারবেন ছেলেটির পরিণতির কাহিনী? সবমিলিয়ে এটিও বেশ সহজ সরল ভাষায় লেখা আকর্ষণীয় একটি কাহিনী। তবে নতুনত্ব বেশি নেই। প্যারানরমাল একটা ঘটনার ইঙ্গিত হয়ত আছে তবে এরকম ইঙ্গিত হামেশাই দেখা যায় এধরণের গল্পে। পরের গল্প 'মা মণি' বেশ ইমোশনাল একটা গল্প। টুম্পার মা শায়লা মারা গেলে নার্গিস তাকে নিজের কাছে এনে রাখল। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই সে টুম্পার মধ্যে অস্বাভাবিকতা দেখতে পেল। টুম্পা দাবি করতে লাগল, তার মা নাকি অন্য কোন এক জগত থেকে তার সাথে যোগাযোগ করছে। নার্গিস ক্রমেই তার প্রমাণও পেতে লাগল। একদিন শায়লা সরাসরি এসে হাজির হল টুম্পার কাছে, তাকেও নিয়ে যাবে মৃত্যুর পরের জগতে - নিজের কাছে। কি করবে নার্গিস? সে কি টুম্পাকে বাঁচাতে পারবে? হয়ে উঠতে পারবে টুম্পার 'মা মণি'? এটাও চিরাচরিত ছকে আবদ্ধ একটা কমন কাহিনী। তবে জাফর ইকবাল স্যারের জাদুকরী লেখায় পুরনো মশলায় মাখা নতুন মুড়ির স্বাদ মন্দ লাগবে না! 'মরিয়মের গ্রাম' গল্পে বলা হয়েছে সুন্দরবনের এক আজব গ্রামে কথা, যে গ্রামের মানুষ বাইরের কারুর সাথে মেশে না আর পূজা করে এক অপদেবতার। তাদের স্বচক্ষে দেখতে এক সাথি নিয়ে সেই গ্রামে হাজির হলেন লেখক। দেখতে পেলেন কিছু আশ্চর্য ঘটনা। সেই ঘটনারই এক পর্যায়ে দেবতাকে তুষ্ট করতে বলি দেয়া হচ্ছিল মরিয়মকে। শেষ মুহুর্তে নাটকীয়ভাবে লেখক বাঁচালেন সেই মেয়েটিকে। এটাকে ঠিক আদি ভৌতিক কাহিনীর কাতারে ফেলা যায় না। তবে গ্রামের অশিক্ষিত জনগণ আর তাদের বিভিন্ন ভয়ংকর কুসংস্কার ও তার পরিণতির কথা বেশ পরিষ্কারভাবেই ফিটে উঠেছে এই গল্পে। 'মড়া' এই বইয়ের শেষ ও আমার সবচেয়ে পছন্দের গল্প। এই গল্প লেখক শুনিয়েছেন এক সদ্য পরিচিত ব্যক্তি আবিদ হাসানের জবানিতে। এনজিও'র কাজে এক চরাঞ্চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই দেখা পান মড়ার, যে নাকি এই পিশাচ। তার কুদৃষ্টি কারো ওপর পড়লে নাকি তাদের ওপর অমঙ্গলের ছায়া নেমে আসে। এমন কয়েকটি ঘটনার উল্লেখও পাওয়া যাবে বইতে। মড়ার কুদৃষ্টি পড়েছিল গ্রামের চেয়ারম্যান কাজেম আলীর পরিবারের ওপরও। কাজেম আলী প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। ওদিকে আবিদ হাসানের সাথে বেশ আন্তরিকতার একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে মড়ার। কিন্তু আবিদ হাসান পারেন না মড়াকে কাজেন আলীর রোষের হাত থেকে বাঁচাতে। গ্রামবাসী চোখ তুলে নেয় মড়ার। তারপর কাজেম আলী চড়াও হয় মড়ার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আবিদ হাসানের ওপর। তখন মড়া ঠিকই আবিদ হাসানকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে। প্রাণ হারাতে হয় মড়া ও তার পোষা কুকুর বাঘা - দুজনকেই। কিন্তু মড়া তো পিশাচ তথা জিন্দালাশ। তাই সে মরে না। খুব সম্ভব তার আত্মা স্থানান্তরিত হয় এক দেহ থেকে অন্য দেহে। এভাবেই সে ফিরে এসে প্রতিশোধ নেয় কাজেম আলীর ওপর। এই-ই হল মড়ার কাহিনী। একেবারেই অবিশ্বাস্য। লেখক এবং আবিদ হাসান দুজনেই তা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তারপরও তো দুনিয়ায় কত ব্যাখ্যাতীত ঘটনাই থাকে। এটাও সেরকমই ঘটনা কিনা, সে বিষয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন তারা। গল্পটি পড়ার পর পাঠকের মনেও একই মনোভাবের সৃষ্টি হবে। পরিশেষে একটা কথাই বলব, এই সংকলনের সব গল্পই যে খুব ভাল তা না। তবে অন্তত দুটো গল্প আমার ব্যক্তিগতভাবে দারুণ লেগেছে। পাঠকেরও মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা এই টাইপের গল্পগুলো অবশ্যই ভাল লাগবে, এই আশা করছি।
Thriller
1
বই : নাথিং লাস্টস ফরএভার লেখক : সিডনি শেলডন অনুবাদক : অনীশ দাস অপু প্রকাশক : অনিন্দ্য প্রকাশ প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি, ২০১১ ঘরানা : মেডিকেল থ্রিলার পৃষ্ঠা : ২৮০ মুদ্রিত মূল্য : ৩৬০ টাকা বইটি এমন সময়ের পটভূমিতে লেখা, যখন মহিলা ডাক্তার এর সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। সাল ১৯৯০। এমবারকাডেরো নামক এক বিশাল কাউন্টি হাসপাতালে প্রথমবারের মত প্রথম বর্ষের রেসিডেন্ট হয়ে এল তিনজন নারী। পেগি টেলর, ক্যাট হান্টার এবং হানি ট্যাফট। এর মধ্যে আবার দুজনের আছে কালো অতীত। প্রায় হাজারখানেক পুরুষ ডাক্তার এর মাঝে মাত্র তিনজন মহিলা যেন অথই সাগরে পড়ল। কিন্তু ওরা নিজেরা খুব ভাল বন্ধু হয়ে গেল, আর নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে এখানে টিকে থাকার প্রতিজ্ঞা করল। বিরামহীন ডিউটি, সংখ্যালঘু হওয়ার যণ্ত্রণা, আবার কখনো কোন ডাক্তার এর ব্যাক্তিগত আক্রোশ এর শিকার, এমন নানা প্রতিকূল ঘটনা ওদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলল। এক রোগীর স্বেচ্ছামৃত্যুতে সহায়তা করে তাকে হত্যার দায়ে ফেঁসে গেল পেগি, কারণ রোগী তার নামে রেখে গেছে এক মিলিয়ন ডলার। "আর কোনদিন কোন পুরুষকে আমার শরীর স্পর্শ করতে দেবনা" বলে প্রতিজ্ঞা করা ক্যাট প্রেমে পড়ল এক খেলোয়াড়ের, যা তাকে নিয়ে গেল করুণ পরিণতির দিকে। অন্যদিকে হানি তার সমস্যাগুলোর সমাধান করতে লাগল তার পুরনো উপায়ে। শেষ পর্যন্ত এই তিন কন্যার ভাগ্যে কি ছিল? পাঠ প্রতিক্রিয়া : আমি থ্রিলার পড়তে অসম্ভব পছন্দ করি। সিডনি শেলডনের হলে তো কথাই নেই। উনার মত বিশাল কাহিনীর ট্যুইস্ট আর কারো লেখায় পাইনি এখনো। প্রায় প্রতিটা বই ই এমন যে, শেষ না করে উঠা কঠিন। অন্যরা যেমন হুমায়ূন আহমেদ এর বই রেখে রেখে পড়ছে, আমি এনার বেলায় ঠিক তাই করছি, ফুরিয়ে গেলে যে আর পাবোনা। শেল্ডনের অন্য বইগুলোর থেকে এটা একটু কম ভাল লেগেছে, কাহিনীর ট্যুইস্ট এবং রহস্য কম ছিল। পেগি এবং ক্যাট চরিত্র দুটো ভাল ছিল। চরম দু:সময়েও ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শিক্ষা রয়েছে ওদের মাঝে। হানিকে ভাল লাগেনি, কেন সেটা পাঠক নিজেই বুঝবেন। সবথেকে মজা লেগেছে বই এ দুই জায়গায় বাংলাদেশ এর নাম উল্লেখ করেছেন লেখক। অনুবাদ নিয়ে বলার কিছু নেই। অনীশ দাস অপুর অনুবাদ পড়লে মনে হয়না যে অনুবাদ পড়ছি। সময় কাটানোর জন্য ভাল বই। আর যারা আগে শেলডনের বই পড়েননি, তাদের অবশ্যই ভাল লাগার কথা। রেটিং : ৭.৫/১০
Thriller
1
একসময় দিনরাত গল্পের বইয়ে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতাম। কিন্তু বর্তমানের কর্মব্যস্ত জীবনে আর আগের মত বই পড়ার সময় পায় না। দুদিন আগে আমার জন্মদিনে স্কুললাইফের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু বইটা গিফট দিয়ে একেবারে হুকুম করে বসল বইটা শীঘ্রই পড়ার জন্য। পরে কোন এক সময় পড়ব ভেবেও আজ বিকেলে কি মনে করে বইটা পড়া শুরু করলাম এবং এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করে উঠলাম। বইটা শেষ না করে কিছুতেই উঠতে পারছিলাম না। খেতে বসেও মন পড়ে ছিল বইটাতে। সত্যিই এই লেখিকার ক্ষমতা আছে প্রত্যেকটা বাক্যে আকর্ষণের জাল বুনার যা পাঠককে বেঁধে রাখে বইয়ের পৃষ্ঠাতে পৃষ্ঠাতে। পাঠক হারিয়ে যায় লেখকের সৃষ্ট বইয়ের জগতে। এই গল্পের জাদুময় জগতের মত এই লেখিকার হাতেও মনে হয় আছে কোন জাদুর কলম যার অসামান্য লেখনিশক্তি পাঠককে মুগ্ধ করে রাখে। অনেক বছর পর একটা ভালো উপন্যাস পড়লাম। লেখিকার আরো দুটি উপন্যাস আগেই প্রকাশ পেয়েছে দেখলাম। সেগুলোনও পড়ার জন্য প্রবল আগ্রহ বোধ করছি। আশা করি পড়ে ফেলব খুব তাড়াতাড়ি। অবশেষে লেখিকা ইশিতা জেরিনকে সাধুবাদ জানাই আর বাংলাদেশের পাঠকগোষ্ঠীকে অভিনন্দন এরকম একজন অসাধারন সাহিত্যিকের লেখার সাথে পরিচিত হওয়ার, তাঁর লেখা পড়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য, যার লেখা পড়ে আমি পাঠমুগ্ধ।
Fiction
0
যারা বর্তমান সাৎেযন্স ফিকশন পড়ে এবং দেখে অভ্যস্থ, তাদের কাছে এইচ. জি. ওয়েলস এর লেখা সায়েন্স ফিকশনগুলো ঠিক সায়েন্স ফিকশন মনে হবে না। টাইম মেশিন পড়বার সময় পাঠক যদি চিন্তা করেন, কোন সময়ে বসে ওয়েলস এই বইটি তিনি লিখেছেন, সেই সমযকার বিজ্ঞান এর অঘ্রগতি কি ছিল, তা হলে হয়ত তারা এর কেবলমাত্র সায়েন্স অংশটুকুকে সমালোচনা করার বদলে একই সাথে ফিকশন অংশটিকেও উপভোগ করতে পারবেন। সায়েন্স ফিকশন এর এই এক সমস্যা... আজ যেটা অসাধারণ আধুনিক ধারনা, কাল সকাল হতেই সেটা যে পুরনো কোন ধারনায় পরিণত হবে না, এই গ্যারন্টি স্বয়ং লেখকও দিতে পারবেন না। আর তাই, বইটি লেখার সময়ে যে অসাধারণ সাড়া জাগিয়েছিল, এখনকার পাঠকের মনে তা হয়ত তৈরি করতে পারবে না। তবে গল্পটি ভাল, সুতরাং পড়ে দেখলে সময় নষ্ট হবে না। এছাড়া এটি একট ওয়ার্ল্ড ক্লাসিক।
Science-Fiction
4
প্রথম প্রশ্ন- আপনি কি বাচ্চাকাচ্চা অপছন্দ করেন? তাদের কৌতুহলী প্রশ্নে বিরক্ত বোধ করেন? দ্বিতীয় প্রশ্ন - ছোটদের কাজকে আপনার অযৌক্তিক বলে মনে হয়? অল্প বয়সেই বেশি বুদ্ধিমান বাচ্চাকে ইঁচড়েপাকা বলে মনে হয়?তবে প্লিজ আপনি এই বই পড়বেন না। বইটি আপনার জন্য না। আপনি বরং আপনার বুড়ো মন আর রাশভারী মেজাজ নিয়েই থাকুন আর এদিকে আমরা "বাবাকোয়া" দের পৃথিবীতে উঁকি দিয়ে আসি। ছোট্ট বাবাই। বয়স যার মাত্র ৫ বছর, সে নিজেকে সবার কাছে "ক্যাপ্টেন বাবাকোয়া" হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি পছন্দ করে। প্রতিদিন বাবাকোয়া কোন না কোন এডভেঞ্চার মিশন সম্পন্ন করে থাকে। অবশ্য এসব মিশনের মাঝে স্টোর রুমের ইঁদুর গুলিকে দেখাশোনার পর্বও আছে! না, এতে হাসির কিছু নেই। বাবাকোয়া সকল জীবের প্রতি খুবই সহানুভূতিশীল! শুধু এসব মিশনে অংশ নিয়েই সে থেমে থাকেনা। তার সমস্ত মিশন এর পূর্ণাঙ্গ বিবরণ এবং পরবর্তী মিশন এর কর্মশালা সে কাগজে লিপিবদ্ধ করে থাকে। তার ব্যক্তিগত ডায়েরীর উপরে বড় বড় করে লিখা " ক্যাপ্টেন বাবাকোয়ার গোপন মিশনসমূহ"! যদিও বাবাই এসব এডভেঞ্জার রূপী কর্মকান্ড তার মা নভেরা দু'চোক্ষে দেখতে পারেননা এবং সুযোগ পেলেই বাবাইকে ধোলাই দিতেও পিছপা করেন না, তবুও বাবাই থেমে থাকেনা! দুর্বার গতিতে সে এগিয়ে চলে তার মিশনে! তাকে কিছুটা সাহায্য করে খালামণি মিথিলা। এবং বাবা জাহিদ উৎসাহ এবং পরামর্শ দিয়ে সব সময় পাশে থাকে বাবাইয়ের। "ক্যাপ্টেন বাবাকোয়া" বইটি বাবাইয়ের অতি মজাদার সব ঘটনার নথিপত্র। যেখানে প্রতিটি গল্প অদ্ভুত, সেই সাথে হাস্যকর কিন্তু শিক্ষামূলক। কৈশোরে জাফর ইকবাল এর স্যার কিশোর উপন্যাস পড়ার দীর্ঘদিন পর আবার বাচ্চাদের এত চমৎকার এই বইটি পড়লাম। আমার ধারণা বাচ্চাদের পছন্দ করেন না এমন মানুষ হাতে গোণা। পছন্দের মাত্রা কমবেশি হতে পারে। কেও অতিরিক্ত পছন্দ করে,কেওবা কম। কিন্তু একেবারেই পছন্দ করেনা এমন মানুষ সংখ্যায় নগণ্য। এক শিশুর মুখের হাসি দেখে অতি পাষাণের মন টাও গলে যাবে এটাই প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম। যদিও এই যুগে এসে কচি বাচ্চারাও বিকৃত মানুষের বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছেনা! এরা মানুষ রূপী জানোয়ার। এদের হিসেব আলাদা। ব্যক্তিগত ভাবে আমি বাচ্চাদের খুব পছন্দ করি। অতিরিক্ত পছন্দ! এজন্যেই আমি যখন কাহিনী গুলি পড়ি তখন বারবার এটাই মনে হচ্ছিলো, ইস্! বাবাই কেন আমার ছেলে না! এমনকি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার ছেলে বা মেয়েকে বাবাইয়ের মতো নীল হেলমেট পরিয়ে রাখবো সব সময়। সে গম্ভীর মুখে আমার পুরো বাড়িতে হেলমেট মাথায় ঘুরাঘুরি করবে, এই দৃশ্য ভাবতেই এক অন্যরকম অনুভূতি হয়। লেখক এর সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো "অমিয়েন্দ্র" বইটি পড়ার মাধ্যমে। তখনি মুগ্ধতা এসেছিলো। "ক্যাপ্টেন বাবাকোয়া"তে এসে লেখকের আলাদা এক লিখনীর সাথে পরিচয় হলো। আমার মনে হয় বাচ্চাদের বই লিখা অনেক কঠিন। কারণ এজন্য আপনাকে একটি বাচ্চার মতো করে চিন্তাভাবনা করতে হবে। জীবনের স্রোতে ভেসে শৈশবকে পেছনে ফেলে বাস্তবতার স্পর্শে পুড়ে খাক হবার এই বয়সে এসে একটি নিষ্পাপ বাচ্চার চোখে সব কিছু দেখা চাট্টিখানি কথা নয়। আর যদি বাচ্চাদের নিয়ে লিখা বইটি বড়দের কেও সমান ভাবে আনন্দ দিতে পারে,তবে বুঝতে হবে লেখক সার্থক। ফরহাদ ভাই এক্ষেত্রে সফল পুরোপুরি তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। লেখক এর জন্য শুভকামনা রইলো। ক্যাপ্টেন বাবাকোয়া বইটির প্রচ্ছদ দেখেই আমি মূলত বইটির প্রতি আগ্রহী হই। দারুণ এক প্রচ্ছদ! দেখতেই শান্তি শান্তি লাগে। বেশ কিছু বানান ভুল ছিলো,প্রিন্টিং মিসটেক। আর যেটা খারাপ লেগেছে তা হলো, সংলাপে লেখ্য আর কথ্য ভাষার সংমিশ্রন। এক জায়গায় বাবাই বলছে,"খাইছি" তো আরেক জায়গায় বলছে "খেয়েছি"। যেকোন একটা বজায় রাখলেই বেশি ভালো লাগতো।বাবাকোয়াদের জন্যেই আসলে পৃথিবীটা সুন্দর। হাফধরা প্রাপ্তবয়স্ক মনের আড়ালেই শিশু মনকে বাবাকোয়ারা নাড়া দিতে পারে। আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় শৈশবের স্মৃতিময় সেইসব ছেলেমানুষির দিনগুলিতে। নিজেই অজান্তেই ঠোটের কোণে ফুটে উঠবে হাসি।সবশেষে বলবো, বাবাইরা ভালো থাকুক,সুস্থ থাকুক। পৃথিবীর, সমাজের নোংরামির কবল থেকে বাবাইরা মুক্ত থাকুক। আর আমরাও যেন বাবাইদের স্পর্শে কিছুটা পবিত্র হওয়ার সুযোগ পাই। ভালবাসা তাদের জন্য।
Childrens-Book
2
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই: দ্য বুক অব ফ্যাক্টস ১ লেখক: আইজ্যাক আজিমভ অনুবাদ: হাসান খুরশীদ রুমী প্রকাশনা: ঐতিহ্য মূল্য:২০০৳ দ্যা বুক অব ফ্যাক্টস 1 গ্রাণ্ড মাস্টার অব দ্য সায়েন্স ফিকশন আইজ্যাক আসিমভের এক অনন্য সৃষ্টি দ্য বুক অব ফ্যাক্টস। এবইকে একক ভাবে দেখকে মনে হয় এটা সাধারণ জ্ঞানের বই। কিন্তু এটা এমন এক বই যা পড়লে তৃপ্তিতে মন ভরে যেতে বাধ্য। রিভিউ: প্রথমে এই বইয়ের সূচিপত্র: রাজাদের কাহিনী রাণিদের কাহিনী ধনরত্নের কাহিনী আমেরিকান বিপ্লব আমেরিকান ইণ্ডিয়ান প্রাচীন সভ্যতা প্রাণীদের জগৎ দান শিল্পকলা মোদ্দাকথা বিপর্যয় বাচ্চাকাচ্চা শহরের কাহিনী ঠাণ্ডা বিষয়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা যৌগিক ও মৌলিক গা শিরশিরে খানাপিনা আবিষ্কার খামখেয়ালী পনা শক্তি অভিযান ফ্যাশন পাখ-পাখালি।। সুচিপত্র যত মজার। ভিতরের তথ্য তার চেয়ে ও বেশি মজার। যেমন: আপনি কী জানতেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আকাশ ভ্রমণে পাখির ভূমিকা ছিল? তীব্র শ্রবণ শক্তির কারণে আইফেল টাওয়ারে তোতা পোষা হত। যাতে করে প্লেনের আওয়াজ সে মানুষ শুনার আগেই মানুষকে দিতে পারে। এখান থেকে আপনি জানবেন, নিষেক/সঙ্গম হবার পরেও স্ত্রী কবুতর ডিম পারতে পারে না।ডিম্বাশয় কাজ করার জন্য তাকে আর একটা কবুতর দেখতে হবে। অন্য কোনো কবুতর পাওয়া না গেলে বাসায় আয়নার প্রতিচ্ছবিই যথেষ্ট ডিম পারার জন্য। পাঠক এখান থেকে জানতে পারবে, পিয়েরে এবং মেরি কুরী রেডিয়াম (একধরনের ভারী তেজস্ক্রিয় ধাতু) তৈরী পদ্ধতির পেটেন্ট নিতে অস্বীকৃতি জানান, কারণ তারা মনে করতেন, রেডিয়াম প্রকৃতির সম্পদ। এর থেকে লাভ করার কোনো অধিকার তাদের নেই। এ ছাড়াও আরো হাজারের অধিক তথ্যে এ বই ভরপুর, যা পড়তে গিয়ে পাঠকের কখনো ক্লান্তি আসবে না পাঠপ্রতিক্রিয়া: এ অসাধারণ বইটি পাঠকের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে দৃঢ়তর ভূমিকা রাখবে। আমার কাছে এর রেটিং 4/5
Childrens-Book
2
বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক আসিফ মেহ্দী।তাঁর প্রকাশিত সায়েন্স ফিকশন বই দুইটি।ফ্রিয়ন তাঁর প্রকাশিত প্রথম সায়েন্স ফিকশন।বইটি মূলত তিনটি সায়েন্স ফিকশন গল্পের সমন্বয়।গল্প ৩টি হল-ভয়ংকর অনুনাদ,বিজ্ঞানী গারাদের ত্রাসের জগৎ এবং ফ্রিয়ন।৩টি গল্প তিন স্বাদের।ভিন্ন ভিন্ন মজার কাহিনীর। প্রথম গল্পটির নাম ভয়ংকর অনুনাদ। এ গল্পের মূল প্রতিপাদ্য হল বিজ্ঞানের অতি সাধারণ একটি ঘটনা-অনুনাদ।অথচ এই অতি সাধারণ ঘটনাটাই কতটা অসাধারণ আর অস্বাভাবিক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটাতে পারে সেটাই গল্প বলার ছলে এই গল্পে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।চট্টগ্রামের একটি পাহাড় ঘেরা অভিজাত এলাকা খুলশী।কাহিনীর কেন্দ্রস্থল এই খুলশীই।গল্পের মূল নায়ক ধ্রুব।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূ-তত্ত্ববিদ্যায় মাস্টার্স করেছে সে।সবসময় পৃথিবীর নানা রকম জিনিস নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে সে।গবেষণায় প্রচুর আগ্রহ।সে ভালবাসে তূবা নামের একটি মেয়েকে।তূবাও তাকে ভীষণরকম ভালবাসে।কিন্তু এই ভালবাসার কথা কারোওএকে অন্যকে বলা হয়নি। ধ্রুব তূবাকে ভালবাসলেও তাঁর কেন যেন এই ভালবাসার প্রতি ততটা মনোযোগ নেই।সে শুধু তার অবচেতন মনে অনুভব করে যে সে তূবাকে ভীষণ ভালবাসে।অনেকটা পাগল গোছের এই ছেলেটাই তার নিরন্তর গবেষণা দিয়ে আবিষ্কার করেছে এক ভয়াবহ যন্ত্র।সে যন্ত্রের এক ভয়াবহ প্রয়োগে সারা দেশবিচলিত।ঘটে গেছে এক ভয়াবহ ভূমিকম্প।যার কারণ উদঘাটনে চ্যানেলে চ্যানেলে টকশো,নানাবিধ তর্ক বিতর্ক।কিন্তু আসল কারণ কারও জানা নেই।কারও জানা নেই সাধারণের মাঝে মিশে থাকা এক অসাধারণ তরুণের কথা,তার অনন্য সাধারণ এক আবিস্কারের কথা।গল্পের আরও একটি অংক –তূবা আর ধ্রুব'রপ্রেমের রসায়ন।তাদের অব্যক্ত প্রেমের গল্প আর প্রেমের নায়ক-নায়িকার এক অসাধারণ আবিষ্কার আর কীর্তির এবং বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর বিষয় অনুনাদের নানাদিক নিয়ে এগিয়ে গেছে ভয়ংকর অনুনাদ গল্পের কাহিনী। গল্পের সাথে রয়ে যাবে তাই পাঠকের রোমাঞ্চও! দ্বিতীয় বিজ্ঞান কল্পকাহিনী মূলক গল্পটির নাম ফ্রিয়ন। গল্পটি একটি গ্রহ কে নিয়ে। শান্ত আর নিরিবিলি একটি গ্রহ। সবুজে ভরা সুশীতল গ্রহটি যেন নিরব থাকা এক আপাদমস্তক দগ্ধ মানুষের প্রতিচ্ছবি। যার নিজের মুখে কোন আর্তচিৎকার নেই। কিন্তু তার পুরোটা শরীর প্রতিনিয়ত জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই গ্রহটিও তাই। গ্রহের মানুষগুলো গারাদ নামের একজন বিজ্ঞানীর হাতের কব্জায়। তারা মারাত্মক রকম পরাধীনতা নিয়ে জীবনযাপন করে। কিন্তু সেই পরাধীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের চিন্তা করার অধিকারটুকুও তাদের দেওয়া হয়নি। তবে তাদের আশার আলো নিভে যায়নি। তাদের মানুষের মত বেঁচে থাকার অধিকার অর্জনের জন্য নীরবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে একদল মহৎ মনের মানুষ। এই ভালো খারাপের ভয়াবহ এক যুদ্ধের গল্পের নামই ফ্রিয়ন। তৃতীয় সায়েন্স ফিকশন গল্পটি বইটির নাম গল্প। গল্পের বিষয়বস্তু জারিফ নামের এক ছেলেকে কেন্দ্র করে। সাথে আছে এগিয়ে যাওয়া পৃথিবীর ভয়াবহ কিছু সমস্যা। আছে জারিফের বোনের আজব এক রোগ যা তাকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মহাজাগতিক এসব সমস্যার সমাধান কিভাবে হল জারিফ আর ভিনগ্রহের কিছু প্রাণীকে সাথে নিয়ে তারই এক সুন্দর গল্প ফ্রিয়ন। পরিশেষে বলা যায়, গল্প ৩টি পাঠককে সত্যিকার অর্থেই এক অন্যরকম সায়েন্স ফিকশনের জগতে নিয়ে যাবে।
Science-Fiction
4
মাঝে মাঝেই বইটা স্টক আউট হয়ে যায়। প্রকাশনী থেকেও ছাপা কপি শেষ হয়ে যায় প্রায়ই। তারপর আবার রিপ্রিন্ট দিতে হয়। এভাবেই চলছে ২০১৭ সাল থেকে। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রিয় নেতার লেখা বইটি সবসময়ই বেস্টসেলার লিস্টের প্রথমদিকে থাকে। কারণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আগ্রহ তাঁর জীবন নিয়ে জানার আগ্রহ বাঙালীর সারাজীবন থাকবে। আর সেই জায়গা থেকেই আপনার আমার আমাদের সবার পড়া উচিত কারাগারের রোজনামচা বইটি। যেখানে শুধু নেতা শেখ মুজিব নয় আছেন ব্যক্তি শেখ মুজিবের কথা, আছে জেল জীবনের কথা, জীবন সংগ্রামের কথা... বইটি আজই কিনে পড়ে ফেলুন,অন্যদের গিফট করুন।
Political
3
বুক রিভিউ- "রিচার্জ Your ডাউন ব্যাটারি" -ঝংকার মাহবুব বইটা হাতে পেয়ে অনেক ভাল লাগলো। আমার ব্যাটারি একদম Low বললেই চলে। একদিকে সামনে আবার পরিক্ষা! মহাঝামেলায়। কিন্তু তাতে কি? যদি পাশে থাকে আলোচ্য গল্পে মাসুম ভাইয়ার মতো Guideline! যেমনিভাবে তিনি আলোচ্য গল্পের ছাত্র আবিরকে টিপ্স্ দিচ্ছিলেন- কিভাবে পড়ালেখায় খাপ খাওয়াতে হয়, কিভাবে জীবনে উন্নতি করতে হয়, কিভাবে হতাশার করিডোর থেকে বের হতে হয় আর কিভাবে সাফল্যের চূড়ায় আরোহন করতে হয়। এমন একটা Guideline আমারও দরকার ছিল, যা আমি ফেলাম আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব- ঝংকার মাহবুবের কাছ থেকে। পরিক্ষার আগে আমার মাঝে কিছু জিনিসের অভাব ছিল, বিশেষ করে কন্ফিডেন্সের অভাব ছিল। কিন্তু এই বইটি যেন আমার হয়ে কথা বলছে, বইটি যেন বলছে- তোমাকে উন্নতি করতে হলে আরো চেঞ্জ হতে হবে, একবার না পারিলে দেখ শতবার। বইটিতে আরো বেশী ভাল লেগেছে- লেখকের "তুই" শব্দের সম্বন্ধটা, যেন কোনো বড় ভাই আমাকে উপদেশ দিচ্ছে। সবশেষে বইটি আমার জন্য এ বছরের অন্যতম সেরা উপহার।
Motivational
6
স্যার এর এই বই মাস্টারপিস।বাড়ির নাম আতর বাড়ি। বাড়ির মালিক মবিন সাহেব কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন।তার টাকাপয়সার হিসাব রাখার জন্য চারজন চার্টার্ড একাউন্টস আছে। বাড়িতে কর্মচারী নিয়ে তিনি একাই থাকেন। তার আগের ম্যানেজার গুরুতর অপরাধ করেছেন বলে তাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। অবশ্য সে যদি ৫০ হাজার বার কানে ধরে উঠবস করতে পারে তাহলে চাকরিতে পুনরায় বহাল করা হবে। এই সমস্ত জায়গায় লেখক বিশেষ হিউমারের চিহ্ন রেখে গেছেন। শফিক এই বাড়িতে চাকরিতে জয়েন করেছে। বেতন ভাল, কিন্তু কাজটা কি সেটা সে এখনও জানেনা। চাকরিতে জয়েন করার কিছুদিনের মধ্যেই তাকে একটা মোবাইল এবং সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য একটা গাড়ি দেয়া হয়। তার কয়দিন পর চার বেডরুমের একটা ফ্ল্যাটও দেয়া হয়। এতকিছু পেয়েও শফিক কেন জানি মবিন সাহেবকে পছন্দ করে না। যদিও সেটা সে প্রকাশ করেনা।সাধারন নিয়মে মালিককে বলা সাজে না। কিন্তু হয়ত মালিক বুঝতে পারে। মবিন সাহেব একবার বিয়ে করেছিলেন ৭ ঘন্টার জন্য। রাত ১ টা ১০ এ বিয়ে হয়, সকাল ৮ টা ১০ এ তালাক হয়ে যায়। সেই মেয়ের আবার অন্যত্র বিয়ে হয়, একটা মেয়েও হয়। মবিন সাহেবের ধারনা মেয়েটা তার। মবিন সাহেব এখনও সেই মহিলার খোঁজখবর রাখেন। এটা সেটা পাঠান। শফিকের কাজ হলো, সেই মহিলার সাথে যোগাযোগ রাখা। মবিন সাহেব কিছু পাঠাতে চাইলেও শফিকের হাতে পাঠান। এসবের সাথে শফিকের বাবাও যুক্ত হয়ে যান। বেশ ভাল লেগেছে। পড়ে দেখতে পারেন
Fiction
0
বনি গল্পের শুরু হয় আমেরিকা প্রবাসী এক বাঙালি দম্পতিকে নিয়ে।একদিন তারা গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ে কিন্তু তারপর ও বিস্ময়কর ভাবে তাদের কোনো কিছুই হয় না। এর কিছুদিন পড়ে তাদের ছেলে বনি জন্ম নেয়। কিন্তু সে আর দশটি ছেলের মত নয়,মগজ আর চোখ বাদে শরীরের প্রায় পুরো পার্ট অসার। তাই নিউরো সার্জন ডক্টর ক্রিল তার মস্তিস্কের পরীক্ষা করতে যায় কিন্তু তিনি এক অদ্ভুত চক্রের বাধা পান। এদিকে কলকাতার এক শখের বৈজ্ঞানিক এর বাসায়ও অদ্ভুত কর্মকান্ড শুরু হয়। সারা এলাকায় লোড শেডিং হোলেও তার বাসায় কারেন্ট থাকে ,সাদা - কালো টিভি রঙিন ছবি দেখানো শুরু করে তাতে আবার আমেরিকার এনবিসি এর খবর(!)যাতে বনির খবর দেখায় কারণ ততদিনে বনি কিছু অতিপ্রাকিতিক ক্ষমতা দেখানো শুরু করেছে।তার সাথে এক চিনা বৈজ্ঞানিক এর খবর ও দেখায় যে তার এক মুল্যবান আবিষ্কার হারিয়েছে।এখন বনির সাথে চিনা বৈজ্ঞানিক এর সম্পর্ক আর এই দুই ঘটনার সাথে কলকাতার ঘটনার কি সম্পর্ক তা জানতে পড়তে হবে "বনি" . -------------------------------------------------------------------------------- Rating:8/10 (শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর অদ্ভুতুরে সিরিজ মূলত পড়ি কমিক রিলিফ এর জন্য।সাধারণত এই সিরিজ এর গল্পের পটভূমি হয় গ্রামে। সেখানে থাকে নানা রকমের অদ্ভুত মানুষ আর বিভিন্ন রকমের ভুত প্রেত আর গুপ্তধন।বেশির ভাগ সময় ই হাসি তামাসা দিয়ে গল্প শুরু হয় আর এই ভাবেই চলতে থাকে। বনি ও এই রকম কোনো গল্প ভেবে শুরু করেছিলাম। কিন্তু দুই পেজ পড়তেই বোঝা যায় অদ্ভুতুরে সিরিজ এর আড়ালে এটি একটি সাই-ফাই থ্রিলার ! যেখানে সবগুলো অতি প্রাকিতিক ঘটনার ব্যাখা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে যা অন্য গল্প গুলোতে পাওয়াই যায় না। তবে নেগেটিভ দিক বলতে চিনা বৈজ্ঞানিক এর কর্মকান্ড একটু ঘোলাটে লেগেছে। এটি বাদে রহস্য, কল্প বিজ্ঞান আর অদ্ভুত ঘটনার মিশেলে " বনি " আমার পড়া এখন পর্যন্ত অদ্ভুতুরে সিরিজ এর সেরা বই !
Science-Fiction
4
সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে সমান ভাবে সফল ছিলেন আবুল মনসুর আহমদ। 'আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর' বইটি তার রাজনৈতিক জীবনীগ্রন্থ। ১৮৯৮ সালে জন্ম নেওয়া আবুল মনসুর আহমদ ১৯২০ এর দশক থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এই ভূখণ্ডের রাজনীতিতে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা তার একটি অনবদ্য কাজ। ছিলেন এ. কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আস্থাভাজন। কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে। কাজ করেছেন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে। কিছু সময়ের জন্য পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন। করেন। ১৯২০ থেকে পরবর্তী পঞ্চাশ বছর এই ভূখণ্ডের রাজনীতি এবং আবুল মনসুর আহমদ এর রাজনৈতিক জীবন জানতে বইটি পড়ে ফেলা যায়।
Political
3
আব্দুল মতিন (জন্ম: ৩ ডিসেম্বর, ১৯২৬- মৃত্যু: অক্টোবর ৮, ২০১৪[১]) ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনের অন্যতম ভাষা সৈনিক। ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় এবং সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক পান।আব্দুল মতিন ১৯২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার ধুবালীয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আব্দুল জলিল এবং মায়ের নাম আমেনা খাতুন। তিনি ছিলেন তাদের প্রথম সন্তান। জন্মের পর তাঁর ডাক নাম ছিল গেদু। ১৯৩০ সালে গ্রামের বাড়ী যমুনা ভাঙনে ভেঙ্গে গেলে আবদুল জলিল জীবিকার সন্ধানে ভারতের দার্জিলিং এ চলে যান। সেখানে জালাপাহারের ক্যান্টনমেন্টে সুপারভাইস স্টাফ হিসেবে একটি চাকরি পেয়ে যান। ১৯৩২ সালে আব্দুল মতিন শিশু শ্রেণীতে দার্জিলিং-এর বাংলা মিডিয়াম স্কুল মহারাণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন এবং তখন সেখানেই তাঁর শিক্ষা জীবনের শুরু। ১৯৩৩ সালে আব্দুল মতিনের মাত্র ৮ বছর বয়সে তার মা অ্যাকলেমশিয়া রোগে মারা যান। মহারানী গার্লস স্কুলে ৪র্থ শ্রেণী পাশ করলে এখানে প্রাইমারি স্তরের পড়াশোনার শেষ হয়। এরপর ১৯৩৬ সালে দার্জিলিং গভর্মেন্ট হাই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন। তিনি ১৯৪৩ সালে এনট্রেন্স (মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা) পরীক্ষায় ৩য় বিভাগ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। আব্দুল মতিন ১৯৪৩ সালে রাজশাহী গভর্মেন্ট কলেজে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষে ভর্তি হলেন। ২ বছর পর ১৯৪৫ সালে তিনি এইচ এস সি পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে আব্দুল মতিন ব্রিটিশ আর্মির কমিশন র‌্যাঙ্কে ভর্তি পরীক্ষা দেন। দৈহিক আকৃতি, উচ্চতা, আত্মবিশ্বাস আর সাহসিকতার বলে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কমিশন পান। এরপর তিনি কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালোর গিয়ে পৌঁছান। কিন্তু ততদিনে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। ফলে তিনি একটি সার্টিফিকেট নিয়ে আবার দেশে ফিরে আসেন। দেশে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি ১৯৪৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অব আর্টসে (পাস কোর্স) ভর্তি হলেন। ফজলুল হক হলে তাঁর সিট হয়। ১৯৪৭ সালে গ্র্যাজুয়েশন কোর্স শেষ করেন এবং পরে মাস্টার্স করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে।[৩] কর্মজীবন ও রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা] ১৯৫২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলায় আব্দুল মতিনের অবদান অন্যতম।[৩] সেবছর ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের ছাত্রসভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন তিনি। তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই কলাভবনের জনসভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ১৪৪ ধারা ভঙ্গের। [৪] তাঁরই নেতৃত্বে একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সারা বাংলার জন্য আন্দোলনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ভাষা আন্দোলনের পর তিনি ছাত্র ইউনিয়ন গঠনে ভূমিকা রাখেন এবং পরে সংগঠনটির সভাপতি হন। এরপর কমিউনিস্ট আন্দোলনে সক্রিয় হন। ১৯৫৪ সালে পাবনা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক হন আব্দুল মতিন। মওলানা ভাসানী ন্যাপ গঠন করলে তিনি ১৯৫৭ সালে তাতে যোগ দেন।[৫] ১৯৬৮ সালে তিনি পাবনা জেলাকে ভিত্তি করে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল)-এর ভেতরে আলাউদ্দিন আহমদকে নিয়ে এক উপদল গড়ে তোলেন। পরে তিনি দেবেন শিকদার, আবুল বাশার, আলাউদ্দিন আহমদ ও নুরুল হক চৌধুরীর সহায়তায় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। টিপু বিশ্বাস, আলাউদ্দিন আহমদ ও তাঁর নেতৃত্বে পাবনা জেলার জনগণ মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা পালন করেন।[৬] চীনকে অনুসরণকারী বামপন্থি দলগুলোর নানা বিভাজনের মধ্যেও আবদুল মতিন সক্রিয় ছিলেন রাজনীতিতে। ১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ২০০৬ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। পরবর্তীকালে ২০০৯ সালে হায়দার আকবর খান রনোর নেতৃত্বে ওয়ার্কার্স পার্টি (পুনর্গঠন) গঠিত হলে আবদুল মতিন তাদের সঙ্গে যোগ দেন।[৫] পরবর্তীতে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (পুনর্গঠিত) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ গঠিত হয় এবং আবদুল মতিন নবগঠিত বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাথে ঐক্যবদ্ধ হন। তিনি এই পার্টির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য মনোনীত হন এবং আমৃত্যু তিনি এই পদে আসীন ছিলেন।[৭]
Political
3
রবোট নিয়ে যে কীসব চমৎকার গল্প হতে পারে তা বিশ্বজিৎ দাসের লেখা রবু নামের রোবটটি না পড়লে আপনার ভাবনা অসম্পূর্নই থেকে যাবে। ৭টি গল্পের চমৎকার সমাহার রবু নামের রোবটটি। প্রতিটি গল্পই স্বতন্ত্রতায় ভিন্ন। মূলত সায়েন্স
Science-Fiction
4
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা বই- দ্য বেষ্ট লেইড প্ল্যানস। লেখক- সিডনী শেলডন। অনুবাদ- অনীশ দাস অপু। ধরন- থ্রিলার, রোমান্টিক। পৃষ্ঠা- ২০৮। প্রকাশনী- অনিন্দ্য প্রধান চরিত্র- লেসলি ষ্টুর্য়াট, অলিভার রাসেল, ডানা ইভান্স, সিনেটর টড ডেভিস, পিটার ট্রেগার। পুরুষটি চায় ক্ষমতা……নারীটি চায় প্রতিশোধ…….. কেনটাকির লেক্সিংটন বেইলি এন্ড টমকিন্স ফার্মে একটি ভালো পদে চাকরি করে লেসলি ষ্টুর্য়াট। তার পদবী রিলেশন এন্ড অ্যাডর্ভাটাইজিং এক্সিকিউটিভ। তার গুনের মধ্যে হচ্ছে সে অসম্ভব সুন্দরী, উচ্চ শিক্ষিতা এবং ক্ষুরধার বুদ্ধির অধিকারিনী। একদিন তাদের ফার্মের অফিসে আসে কেনটাকির গভর্নর পদপ্রার্থী অলিভার রাসেল। অলিভার রাসেল দেখতে খুবই সুদর্শন, স্মার্ট, একজন আইনজীবি ও বুদ্ধিমান। মানুষের সাথে দ্রুত মিশে যাবার ক্ষমতা তার আছে। অলিভার রাসেল চান তার গর্ভণর পদে প্রচারণার জন্য লেসলির প্রতিষ্ঠানের সহায়তা। তাকে এক দেখাতেই লেসলির ভালো লেগে যায়। যদিও রাসেলের নামে অনেক নারীর সাথে জড়ানোর গুজব আছে। জানা যায় এক অজ্ঞাত উৎস থেকে এতোদিন রাসেলের প্রচারণার খরচ আসছিলো। কোনো কারণে তারা ওর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় ও প্রচারণায় সুবিধা করতে পারছেনা। কিন্তু লেসলি দমে যায় না। একসাথে কাজ করে যাবার ফলে দ্রুতই তাদের মধ্যে ঘনিষ্টতা জন্ম নেয়। তা থেকে প্রেম এবং তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু হঠাৎ লেসলি জানতে পারে প্যারিসে একটি মিথ্যে কাজের বাহানা দিয়ে রাসেল অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে বসেছে। সে মেয়ের নাম জ্যান, সিনেটর টড ডেভিসের একমাত্র মেয়ে। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মনটাই মরে যায় লেসলির। সিনেটর ডেভিস নিজে দেখা করেন লেসলির সাথে এবং বিষয়টার জন্য ক্ষমা চান। পাশাপাশি সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দেন। এদিকে ফর্মে ফিরে আসে রাসেল এবং খুব দ্রুতই সে কেনটাকির গর্ভণর হয়ে যায়। ক্ষুদ্ধ লেসলি হয়ে ওঠে প্রতিশোধ পরায়ণ। হেনরি নামক এক বয়স্ক ধনী লোককে বিয়ে করে লেসলি। বছর দুয়েক পর হেনরি মারা যায় এবং হেনরির সমস্ত সম্পত্তির মালিক হন লেসলি। লেসলি তার সাম্রাজ্য বিস্তারে মনযোগ দেন। হেনরির একটি পত্রিকা অফিস ছিলো যা ধুকছিলো। তা দিয়ে লেসলির শুরু। সে দ্রুত তার মিডিয়া সাম্রাজ্য বাড়িয়ে চলে এবং প্রতিদ্বন্দি সমস্ত পত্রিকা ও পাশাপাশি টিভি চ্যানেল কিনে নেয়। অপরদিকে রাসেলের লক্ষ্য হয়ে দাড়ায় হোয়াইট হাউজ। সে লক্ষ্যে সে পৌছেও যায় তার শশুড় সিনেটর ডেভিসের সাহায্যে। এ কাজে তাকে বেশী সহায়তা করে পিটার টেগার। একচোখা টেগার ধার্মিক, পরিবারকেন্দ্রিক ও ক্ষুরধার রাজনিতীবিদ। তার সাহায্যে রাসেল সহযেই হয়ে যায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এবার লেসলি শুরু করে তার হামলা। হামলা করার অ্যালিবাই তার কাছে আছে। কারন প্রেসিডেন্টের আশেপাশে থাকা বেশকিছু মেয়ের মৃতদেহ বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায়। প্রতিটি মেয়েই প্রেসিডেন্ট রাসেলের চেনা। কেউ তার কাজ করতো, কেউ পরিচিত। এসব অ্যালিবাই নিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে রাসেলকে ধসিয়ে দিতে থাকে লেসলি। রাসেলের অবস্থা হয়ে পড়ে অত্যন্ত করুণ। প্রতিটি মৃতদেহে একটা কমন ব্যাপার থাকে। একটি লিকুইড তরল যার নাম একসট্যাসি। এরকম এক তরল একবার রাসেল সেধেছিলো লেসলিকে। বলেছিলো এটা খেলে বিছানায় প্রেম খুব জমে উঠে। লেসলি ড্রাগটা নিতে প্রত্যাখান করেছিলো। ও দুয়ে দুয়ে চার মিলিয়ে নেয় এবং বুঝতে পারে রাসেল কোনো না কোনোভাবে জড়িত। রাসেল সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে পড়ে যায় যখন কলোরাডো গভর্ণরের মেয়েকে একটি হোটেলের ভিআইপি রুমে মৃত পাওয়া যায় এবং তদন্তে তার সাথে হোয়াইট হাউজের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তির আভাস পাওয়া যায়। মৃত্যুর কারণ সেই একসট্যাসি ড্রাগ। পুলিশ জেরার জন্য মেয়েটির প্রেমিককে নিয়ে আসে এবং কাষ্টেডিতে তাকে ফাসি দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। লেসলির নিয়োগকৃত সাংবাদিক যখন রহস্য সমাধানের দ্বারপ্রান্তে তখন তাকেও হত্যা করা হয়। এবার এ তদন্তে আসে দুর্ধষ সাংবাদিক ডানা ইভান্স। সে বের করে ফেলে কে এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি যে এতোগুলো নারীর মৃত্যুর জন্য দায়ী। কিন্তু ততোক্ষনে আতাতায়ী পৌছে গেছে ওর কাছে। ও কি পারবে বিশ্ববাসীকে জানাতে কে সেই খুনী? খুনী কি সত্যিই প্রেসিডেন্ট রাসেল? লেসলি কি রাসেলকে ধসিয়ে দিতে পারবে? সিনেটর ডেভিসেরই বা ভূমিকা কি রাসেলের পিছনে? কেনো সে রাসেলকে প্রেসিডেন্ট বানানোর জন্য এতো বিনিয়োগ করছেন? রাসেল কি তাকে অমান্য করে আরব ইসরাইল শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করিয়ে দিতে পারবে? নাকি শেষ হয়ে যাবে রাসেলের প্রেসিডেন্ট ক্যারিয়ার? কে ধ্বংস করবে রাসেলকে? সিনেটর ডেভিস, লেসলি ষ্টুর্য়াট নাকি অন্যকেউ? শ্বাসরুদ্ধকর রোমান্টিক থ্রিলার। আমেরিকার রাজনিতীকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে পুরো উপন্যাস। সিডনী শেলডন বুঝিয়ে দিয়েছেন কেনো তাকে মিষ্টার ব্লক বাষ্টার বলা হয়। অসম্ভব এই সুন্দর উপন্যাসে রয়েছে টানটান উত্তেজনা। বিশেষ করে শেষ মুর্হুতে এমন সব চমক থাকবে যে পাঠকের মাথা ঘুরে যাবে। কিছুতেই বোঝা যাবেনা আসলে মূল রহস্যের হোতা কে? একটার সাথে আরেকটা ঘটনার চমৎকার যোগসূত্র রয়েছে। সেই সাথে আমেরিকার রোমান্সও ফুটে উঠেছে বিশদভাবে। এসেছে মিডিয়া শক্তির বর্ণনা। এছাড়া মানবিক ব্যাপারও তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। অনুবাদ হিসেবেও এটা প্রথমশ্রেণীর। অনীশ দাস অপু সবসময় চমৎকার অনুবাদ করে থাকেন। এ বইতেও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। বইটা সর্ম্পকে এটাই বলা যায় যে, লেখক আপনার মন নিয়ে খেলা করবে যতোক্ষন বইটি আপনি হাতে রাখবেন। আশা করি সবার পড়তে ভালো লাগবে। রেটিং- ৫.০০/৫.০০
Thriller
1
মুহম্মদ জাফর ইকবালের কাছ থেকে এ পর্যন্ত আমরা বেশ অনেকগুলোই ভৌতিক ছোটগল্প পেয়েছি। ভূত প্রেত বা আদিভৌতিক বিষয়ের ওপর স্যারের খুব বেশি উপন্যাস না থাকলেও, বিজ্ঞান বিষয়ক এই লেখক এক সময় নিয়মিতভাবেই প্যারানরমাল নানা ঘটনার ওপর ভিত্তি করে ছোটগল্প লিখেছেন। সেরকমই ৯টি ছোটগল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে 'পিশাচিনী' নামক স্যারের এই ভৌতিক গল্পের সংকলনটি। প্রতিটি গল্পই যে অসাধারণ, দারুণ ভয়ের এবং শিহরণ জাগানিয়া - এমন কথা বললে তা অবশ্যই অসত্য কথা হয়ে যাবে। কয়েকটি ভাল গল্পের পাশাপাশি কিছু কমজোরি গল্পের মিশেলে এই সংকলন। তবে লক্ষণীয় যে, একই প্রেক্ষাপটে বা একই ধাঁচের একাধিক গল্প একটাও নেই এই বইতে। প্রতিটি গল্পই সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার। একটার সাথে আরেকটার খুব কাছাকাছি কোন মিল পাওয়া যাবে না। কোন গল্পের প্রেক্ষাপট যেখানে বাংলাদেশের কোন একটা অনুন্নত গ্রাম আর কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষকে ঘিরে, তেমনই কোন কোন গল্প আবার আমেরিকার মত দেশের শিক্ষিত মানুষকে কেন্দ্র করে তৈরি করেছেন লেখক। সর্বাগ্রে বলতে হয় এই বইয়ের প্রথম গল্পের কথা। পিশাচিনী, যার নামানুসারে এই বইয়েরও নামকরণ হয়েছে। পিশাচিনী সম্ভবত এই সংকলনের সেরা গল্প। মিসির আলীর কাহিনীর ফ্লেভার পাওয়া যাবে এই গল্পে। একটা সময় পর্যন্ত জাফর ইকবাল স্যার এই গল্পে লজিক আর অ্যান্টি লজিকের খেলা খেলেছেন, যেমনটা হুমায়ুন আহমেদ করেছিলেন মিসির আলীকে নিয়ে লেখা তার গল্পগুলোয়। কিন্তু হতাশার বিষয়, একটা পর্যায়ে এসে জাফর ইকবাল স্যার এই গল্পের কাহিনীকে অ্যান্টি লজিকেরই দ্বারস্থ করিয়েছেন। ফলে গল্পটা নিছকই একটা ভৌতিক কাহিনীতে আবদ্ধ থেকেছে। তারপরও স্বীকার করতেই হবে, গল্পটির প্লট বেশ শক্তিশালী ছিল। ফিনিশিংয়ে এসে চমকপ্রদ কিছু না করে লেখক ব্ল্যাক আর্টের একটি উপাদানকে উপস্থাপিত করেছেন যা এমনিতে যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক তবু যারা আরও ভাল কিছু আশা করেছিলেন তাদের জন্য কিছুটা হতাশার। 'রহমত চাচার একরাত' গল্পটিও ভাল লাগার মত, বিশেষ করে গ্রামীণ পটভূমিতে ভূতের গল্প শুনতে পছন্দ করে যারা তাদের অবশ্যই ভাল লাগবে। লাশ কাটা ঘরে রহমত চাচার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বর্ণিত হয়েছে এখানে। গল্পে লেখক যে ঘটনার কথা বলেছেন তা কি রহমত চাচার সাথে আসলেই ঘটেছিল নাকি কেবলই ছিল এটা তার হ্যালুসিনেশন, সে সিদ্ধান্ত পাঠককেই নিতে হবে। এছাড়া এই বয়ের 'গাড়ি' গল্পটিও বেশ ভাল। সেকেন্ডহ্যান্ড একটা গাড়ির ভেতরে একটি বাচ্চা মেয়ে ঢুকলে গাড়ির পূর্বতন মালিকদের একজনের আত্মা তার ওপর ভর করে, এমনই কাহিনী গল্পের। 'নেকড়ে' গল্পটি যেমনই হোক, এর টিপিক্যাল ছোটগল্পসুলভ ফিনিশিং গল্পের একেবারে শেষে এসে পাঠককে ভয় পাইয়ে দেবে। এছাড়া বাকি যে গল্পগুলো আছে সেগুলোর কাহিনীকে খুব একটা শক্তিশালী মনে হয়নি আমার বা গল্পের কনটেন্ট ইতোমধ্যে বহুল চর্চিত বলে মনে হয়েছে। এর মধ্যে 'সুতোরান্তু' তো একদমই বোধগম্য হয়নি আমার যে এই গল্পে ভয়ের পাঞ্চটা ছিল কোথায়। 'মুতুয়াল পির' গল্পটিকে কেন যেন ছেলেমানুষি মনে হয়েছে। আর 'সহযাত্রী', 'বন্ধ ঘর' ও 'মুগাবালি' গল্প তিনটিকে এভারেজ হিসেবে ভালোর দলেই রাখব আমি। পরিশেষে বলব, ৯টি গল্পের কয়েকটি যেমন আসলেই ভয় পাওয়াবে, তেমনি কয়েকটা পড়ে পাঠক হতাশও হতে পারে। তবে মোটের উপর এই সংকলনটিকে আমি ভালোই বলব। অন্তত 'পিশাচিনী', 'রহমত আলীর একরাত', 'নেকড়ে' আর 'গাড়ি' - এই চারটি গল্পের জন্য পাঠক নিঃসঙ্কোচে বইটি হাতে তুলে নিতে পারে।
Thriller
1
জাফর ইকবাল স্যার তার এই বই এ একটি কিশোরের মনে কৈশোর কালে পরিচিত স্থান ছেড়ে অন্য স্থানে গেলে কি রকম প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় তার এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়েছেন। নতুন বন্ধু তৈরি ছাড়াও সকলের সাথে একাত্মতা এবং দুর্যোগের সময় কিভাবে ছোট থেকেও অপরের সাহায্যে আসা যায় তা দেখিয়েছেন। গল্পের মধ্যে টেনে এনেছেন মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলির কথা। বইটি পরে যে লাইনটি সবচেয়ে ভাল লেগেছে তা হল 'কে কি ভাবছে আমাকে নিয়ে তা নিয়ে মাথা না ঘামাতে। কারন যারা তোকে চিনে না, তারা তোকে পাগল কি ছাগল ভাবে তাতে কিছু আসা যায় না। যারা তোকে চিনে, তারা জানে তুই কতটুকু পাগল্ আর কতটুকু ছাগল।'
Childrens-Book
2
good really
Fiction
0
স্কুলপড়ুয়া কিশোর কিশোরিদের জন্য আবারো একটা কিশোর উপন্যাস উপহার দিলেন সুমন্ত আসলাম। আর এই উপন্যাসের মাধ্যমে যেই গল্পটি তিনি বলতে চেয়েছেন, তা কিশোরদের ভালোই বিনোদিত করবে। নিখাদ আনন্দের উপাদান হয়ে উঠবে। ভিন্ন ধরণের আঙ্গিক গঠনে রচিত উপন্যাস 'রোল নাম্বার শূন্য'। সাধারণত কিশোর উপন্যাসগুলোতে দেখা যায়, কয়েকটা কিশোরের জীবন বেশ ভালোভাবেই কাটছে। হঠাৎ হয়ত তারা কোন একটা সমস্যায় পড়ল। তারপর কিভাবে তারা সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজে পেল, সেটাকে ঘিরেই আবর্তিত হয় কাহিনী। কিন্তু 'রোল নাম্বার শূন্য' সেদিক থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। কাহিনীর শুরুই হয়েছে কোন এক অজানা সমস্যা দিয়ে। সেই সমস্যার কথা অবশ্য প্রথমেই প্রকাশ করেন না লেখক। সমস্যাটা যে আসলে কি, সেটা নিয়েও যথেষ্ট সাসপেন্সের মধ্যে থাকতে হয় পাঠককে। এমনকি এটি এমনই এক ভিন্নধর্মী উপন্যাস যেখানে সমস্যার সমাধান বেরোয় আগে, কিন্তু সমস্যাটা যে আসলে কি তা জানতে পড়ে যেতে হয় একেবারে শেষ অব্দি! ক্লাস সিক্সে পাঠরত সাতিল কোন এক বিশাল সমস্যায় পড়ে, যার সমাধান করতে না পারলে বিপদে সে শুধু একা নয়, পড়বে তার স্কুলের সবাই। সব ক্লাসের সব ছেলেরাই। নিরুপায় হয়ে সেই বিশেষ সমস্যাটার সমাধান করতে সে ডেকে আনে তার ছোটমামাকে যার নাম রাসাদ আর পড়ে অন্য এক স্কুলে ক্লাস এইটে। অত্যন্ত বুদ্ধিমান রাসাদ সাতিলদের স্কুলের হেডস্যারের সাথে কথা বলে এমন ব্যবস্থা করে নেয় যাতে সে কয়েকটা দিন ঐ স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণীতে ক্লাস করতে পারে রোল নাম্বার শুন্য হিসেবে। আর তারপর সেই ক্লাস করার ফাঁকে ফাঁকেই সে এমন কিছু কান্ড করে, যার ফলে গল্পের অজানা সমস্যাটির সমাধানের পথ ক্রমশ সুগম হতে থাকে। এবং একটা সময় এসে তা সমাধানও হয়ে যায়। আর তখনই পরিষ্কার হয় যে ঠিক কোন সমস্যা নিয়ে এত চিন্তিত ছিল সাতিল যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত তার স্কুলের সবাই। দারুণ উপভোগ্য উপন্যাস 'রোল নাম্বার শুন্য'। লেখক রাসাদের মুখ থেকে চুটকি টাইপের যেসব বুদ্ধিদীপ্ত কথা বের করে এনেছেন, সেগুলো ক্ষুদে পাঠকদের নিঃসন্দেহে চমৎকৃত করবে। তবে এটাও মনে রাখা ভাল যে সেসবের অধিকাংশই কিন্তু অনেক পুরনো। জোর করে উপন্যাসের ভেতর লেখক সেগুলোকে যেভাবে ঢোকাতে চেয়েছেন, তা না করে কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে যদি তিনি প্রমাণের চেষ্টা করতেন যে রাসাদ চরিত্রটি আসলেই অনেক বুদ্ধিমান, সেটা হয়ত অপেক্ষাকৃত ভাল দেখাত। তাছাড়া রাসাদের সাথে ক্লাস সিক্স আর সেভেনের ছাত্রদের আলাপচারিতাও খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। প্রথমত, মাত্র ক্লাস এইটে পড়া একটা ছেলে যতই বুদ্ধিমান হোক না কেন, তার মুখ থেকে একটার পর একটা দার্শনিক কথাবার্তা কখনোই 'বিলিভেবল' নয়। সেগুলো বড্ড আরোপিত মনে হয়। আর রাসাদ যে ভঙ্গিতে কথা বলেছে সেটাও অনেক বড় কোন মানুষের মত, একটা কিশোরের মত নয়। ফলে লেখক যে একটা চরিত্রের ভিতরই জোর করে অসংখ্য গুণ চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন, সেটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যার ফলে আমি এ-ও মনে করি যে শেষ পর্যন্ত রাসাদ চরিত্রটি স্বয়ংসম্পূর্ণ তো হয়ই নি বরং জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেছে। পাঠককে চিরচেনা কিছু চুটকির মাধ্যমে বিস্ময়ের ঘোরে বেধে রাখতে গিয়ে লেখক কাহিনীতে খুব কম দৃশ্যেরই অবতারণা ঘটিয়েছেন। দৃশ্যপট যদি আরেকটু বাড়ত, তাহলে কাহিনিটা আরেকটু শক্তিশালী হতে পারত। কারণ সংলাপ শুধু একটি দৃশ্যকে শক্তিশালী করে কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক শক্তিশালী দৃশ্যের অভাবে একটা কাহিনী ঝুলে পড়তে পারে। তবে কিশোর উপন্যাস বলেই হয়ত এই ঝুলে যাওয়াটা এই উপন্যাসের ক্ষেত্রে খুব বেশি প্রকট হবে না। তাছাড়া যে কয়টি ঘটনার উল্লেখ এই কাহিনীতে ছিল, অধিকাংশই বেশ মজার আর নতুনত্বে ভরা। সবমিলিয়ে বলতে পারি, 'রোল নাম্বার শুন্য' কিশোর পাঠকদের জন্য একটা আদর্শ উপন্যাস হতে পারে। অবশ্যই এই উপন্যাস তাদেরকে নতুন কোন বার্তা দিতে না পারলেও, কিছু সময়ের জন্য তাদের মনে ভালো লাগার আবেশ ছড়িয়ে রাখতে সমর্থ হবে। তবে বড়রা সুমন্ত আসলামের নাম দেখে এই বই পড়লে অবশ্যই হতাশ হবেন। বইটাতে ছোট বড় এত খুঁত আছে যে, সেগুলো কেবল বিরক্তিরই উদ্রেক ঘটাবে।
Childrens-Book
2
বই এর নামঃ দ্য ভিঞ্চি কোড লেখকঃ ড্যান ব্রাউন অনুবাদকঃ মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশনাঃ বাতিঘর মূল্যঃ ২৮০ টাকা ( রকমারি) কাহিনীঃ আমরা খালি চোখে যা দেখি তা কি সব সত্য? নাকি তার আড়ালে লুকিয়ে আছে অজানা অনেক কিছু? এক রাতে খুন হল চার জন বিখ্যাত ব্যক্তি। নৃশংসভাবে মেরে ফেলা হয় তাদের। এই চার জন ব্যক্তি ছিলেন খুব গোপন এক সংঘের সদস্য। এরা যুগ যুগ ধরে লুকিয়ে বহন করে নিয়ে বেড়াচ্ছিল এক “সিক্রেট”। যে সিক্রেট বদলে দিতে পারে অনেক জানা তথ্য। বদলে যাবে আপনার জানা ইতিহাস। পুরো পৃথিবী বদলে যাবে নিমেষেই। কি সেই সিক্রেট? এদের ভেতর আছেন এক ব্যক্তি যিনি এক নামকরা জাদুঘর এর কিউরেট। সে মারা যাবার সময়, রবার্ট ল্যংডন এর নাম লিখে যান। তাকে ল্যংডন ঠিকমত চিনেন ও না। কিন্তু তাকে খুন করার অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন রবার্ট। কেউ একজন চাইছে ল্যংডন সাহেব কে ফাঁসাতে। খুব সুক্ষ পরিকল্পনার জালে পা দিয়ে ফেলেছেন ল্যংডন। এর মধ্যে গল্পে আগমন সোফি নেভুর। কে এই সোফি নেভু? তো সেই মৃতব্যক্তির মধ্যে যার লাশের পাশে ছিল রবার্ট ল্যংডন এর নাম লেখা। স্বভাবতই সন্দেহের তীর তাঁর দিকেই। অন্যদিকে যে চার জন খুন হলেন, তারা ছিলেন এমন এক গুপ্ত সংঘের সদস্য, যে সংঘের সদস্য তারা ছিলেন, তার সদস্য ছিলেন এমন কিছু মানুষ যাদের নাম শুনলে আপনি আমি বেশ বড়সড় ধাক্কা খাব। বাস্তবে আমি নিজেই খেয়েছিলাম। সেই দলে ছিলেন, স্বয়ং দ্য ভিঞ্চি, স্যার আইজাক নিউটন, ভিক্টর হুগো সহ আরো অনেকে। সেই সিক্রেট কে একদল প্রাণ দিয়ে রক্ষা করতে চাইছে, অন্য দিকে এক দল চাইছে ধ্বংস করে ফেলতে। আর এই দ্বিতীয় দল খুন করেছে সেই চার জন কে। তাদের খুনের লিস্টে আর কে কে আছে? এইদিকে, এক এর পর এক পাতা শেষ হতে হতে আপনার সামনে আসবে, দ্য লাস্ট সাপার, মোনালিসার হাসির পেছনে লুকানো অনেক রহস্য। যা আপনার পিলে চমকে থমকে দেবেই। এইদিকে রবার্ট ল্যংডন আর সোফির পিছু নেয় কিছু মানুষ। একদিকে পুলিশ অন্যদিকে এক চক্র। পালিয়ে তারা আশ্রয় নেই ল্যংডনের এক বন্ধুর বাড়িতে। সেই বাড়ির কোন এক সদস্য সেই খুনে সঙ্ঘের সাথে জড়িত, আড়ালে থেকে সোফি, ল্যংডন আর সেই বন্ধুর সব খবরাখবর পৌঁছে যাচ্ছে গোপনে। একদিকে খুনে সংঘ, অন্যদিকে পুলিশের দল, কিভাবে পৌঁছাবে সেই রহস্যের কাছে রবার্ট আর সোফি নেভু? সেই রহস্যের কাছে পৌঁছানো কি খুব দরকার? সোফি নেভু কে আসলে? রহস্যময়ী এই নারীর পরিচয় আপনারা জানলে অবাক হয়ে যাবেন। বই শেষ এ একটা প্রশ্ন মাথায় আসবেই, আসলেই কি তাই ?আসলেই আমরা যা জানি সেই সব তথ্যই কি তবে ভুল? ব্যক্তিগত মতামতঃ বইটা পড়তে শুরু করে বেশ দীর্ঘ , মানে বেশ বড়সড় একটা রিডার্স ব্লকে পড়েছিলাম। অন্য অনেকে বই পড়ে ফেললেও কোন কারণে এই বই কোনভাবেই শেষ করতে পারছিলাম না। তবে কিছুদিন আগে শেষ করে আমি নিজেকেই দোষ দিয়েছি, কেন বইটা আগে পড়িনি। যাই হোক অনুবাদ বেশ ভাল আর সাবলীল ছিল।বাতিঘরের বানান ভুল একটু থাকে, সেটা ছিল, তুলনামূলক কিছু কম। এই বই লেখক কে আর অনুবাদ কে সত্যি স্যালুট। ব্রাউন সাহেব যে এই লেখা লেখবার জন্য যে কত বড়সড় পড়াশোনা করতে হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অন্যদিকে যদি এই তথ্যের সব কিছু সত্য হয়ে থাকে তবে? এত ব্যাখ্যা, এত রহস্য একেবারে ভিত্তিহীন নিশ্চয়ই নয়। অন্যদিকে আসলেই জানতে ইচ্ছা করবে মোনালিসা ছবির রহস্য কিংবা দ্য লাস্ট সাপার ছবির মধ্যে কোন অজানা সত্য লুকানো আছে। বইটা আরো একবার পড়ে ফেলব যেকোন সময়, শুধু সময় হাতে পাওয়া দরকার। সোফি নেভু আর রবার্টের সাথে হাজার রহস্য আর কোড ভেদ করতে চাইলে এই বইটা পড়ে ফেলুন। বলা যায় না এমন অনেক কোড আপনি ও বের করে ফেলতে পারবেন, যা দুনিয়াতে তাণ্ডব সৃষ্টি করে ফেলবে।
Thriller
1
বইটি আমার সব থেকে প্রিয় বই। কারন সমূহ হল ১) বইটি তে লেখক কিছু কিছু ঘটনার এত সুন্দর আবেশ তৈরী করেসেন যেটা আমার খুবই ভাল লেগেছে। যেমন "স্বপ্নাচ্ছন্নের মতো একমনে কাজ করে চলেসি, সারাক্ষণ মনের মধ্যে অবিচ্ছিন্ন আলোড়ন " এখানে যে আবেশ তিনি সৃষ্টি করেসেন আমার ভাল লাগছে। ২) কাহিনী নির্ভরতা অনেক সুন্দর একটা বিষয়ের উপর একজন জোরকরে শ্লীলতাহানিরর শিকার মেয়ের কথা যেটা পরে গর্ভপাত পর্যন্ত তারপর মা শব্দটার গভীরতা ! বাচ্চার কান্নার সাথে তার অবেচেতন মনের কান্না। ৩) কাহিনী সংলাপ আমাকে মুগ্ধ করেসে ৪) কাহিনী বর্ণনা সুন্দর লাগছে যেমন পিঁয়াজের প্রতিটা লেয়ার ভাঙলে যে রকম আরও বেশী ঝাঁঝ চোখে লাগে সে রকম আর গল্পের ঝাঁঝে পানি পড়েছো চোখের কিন্তু সেটা আনন্দের ৫)শিল্পী মন, ইচ্ছা আর বন্ধুত এবং প্রতিযোগিতা নিয়ে তার মননের প্রতিফলন আমার কাছে মনে হয়েছে তার বাস্তব জীবন উপলব্ধি আরও অনেক কিছু যেমন সাফল্যলাভ কাহিনী, মানব মননের পরিপক্বতা এমন অনেক বিষয় আমার মনে দাগ কেটেসে বইটা পড়ে। আর এককথায় কাহিনী দ্যোতনা আমার খুব ভাল লাগছে আশা করি বইটা পড়বেন
Fiction
0
ফ্ল্যাপ থেকে একজন মানুষ, যার বয়স প্রায় আমার বয়সের কাছাকাছি, তাকে হঠাৎ করে একটা নতুন নাম দিয়ে দেয়াটা এত সোজা না। হেজিপেজি মানুষ হলেও একটা কথা ছিল কিন্তু অনিক লুম্বা মোটেও হেজিপেজি মানুষ নয়, সে রীতিমতো একজন বিজ্ঞানী মানুষ, তাই কথা নেই বার্তা নেই সে কেন আমার দেয়া নাম দিয়ে ঘোরাঘুরি করবে? কিন্তু সে তাই করেছে, আমি নিজের চোখে দেখেছি কেউ যদি তাকে জিজ্ঞেস করে, “ভাই আপনার নাম?” সে তখন সরল মুখ করে বলে, ”অনিক লুম্বা।” মানুষজন যখন তাকায় তখন সে একটু গরম হয়ে বলে, “এত অবাক হচ্ছেন কেন? একজন মানুষের নাম কি অনিক লুম্বা হতে পারে না?” পাঠ প্রতিক্রিয়া যার কাছে সায়েন্স ফিকশন খুব খটমটে লাগে, সে যদি একটা সায়েন্স ফিকশন এর প্রথম চ্যাপ্টার পড়ে যদি হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে, এমনকি যখনই ব্যাপারটা মনে পড়ে তখনই আপন মনে আক্ষরিক অর্থেই খিলখিল করে হেসে ফেলে - সে কি তার পরেও সায়েন্স ফিকশন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে? মনে হয় না। আর এই ব্যাপারটা সত্যি করা একমাত্র জাফর ইকবাল স্যারের পক্ষেই সম্ভব। . যদি হাসিটা প্রথম চ্যাপ্টারেই আটকে থাকতো তাও না হয় মেনে নেওয়া যেত যে, "প্রথম চ্যাপ্টারে হাসির ইলিমেন্ট থাকতেই পারে। এটা সত্যিই খটমটে সায়েন্স ফিকশন! পরের চ্যাপ্টার থেকেই গম্ভীর মুখ করে পুরো বই পড়তে হবে!" সেটাও হল না। হাসির ইলিমেন্ট বাড়তেই থাকলো। ছোট ছোট বিষয়গুলি নিয়ে স্যারের রসিকতা গুলি পড়তে গিয়ে কিছুতেই হাসি আটকে রাখতে পারিনি। . এলো মশা গবেষণা। এটাতেও শুরুতে হেসেছি। খোক্কশ শয়তানটা যখন দু নম্বরী করতে শুরু করলো তখন একটু হাসি বন্ধ ছিল, তারপর এই চ্যাপ্টারের শেষে শালার পরিণতি পড়ে আবার হেসেছি। সাথে রগচটা কাঠমোল্লার অংশটুকু পড়েও। . তারপর ইন্দুরওয়ালাদের কার্যকলাপও খুব মজা লেগেছে। মাস্তানগুলির অবস্থা কল্পনা করতে গিয়ে ভাবছিলাম, এমনটা যদি সত্যিই হতো কী ভয়াবহ অবস্থাই না হত! অবশ্য এরকম সিচুয়েশনে সবসময় শয়তানেরাই পড়ে! . এরপর এলো কিংকর চৌধুরী। কিংকর চৌধুরীর কথা একটু পরে বলি, আগে জাফর ইকবাল স্যারের কথা বলি। উনি নিজেকে নিজেই এত বেশি পরিমানে, এমনভাবে পচিয়েছেন যে যারা তাঁকে চেনে না, তারা এটা পড়লে নির্দ্বিধায় মেনে নেবে জাফর ইকবালের মত অকর্মা আর হয় না! বিজ্ঞানী অনিক লুম্বার সব আবিস্কারই ইউনিক। তাই জাফর ইকবালের মাধ্যমে কবি কিংকর চৌধুরিকে শায়েস্তা করার পদ্ধতিটাও বেশ ইউনিক ছিল। . বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা উদ্ভট উদ্ভট কাজ করে বেড়ায় বলে কি তার সাথেও উদ্ভট ঘটনা ঘটতে হবে? নইলে সদ্য জন্মানো জলপরী তার বাসার সামনে এসেই পড়বে কেন? যাকগে, জলপরী সত্যিই জলপরী কিনা, কিংবা কেন তার নাম জলপরী, সেসবে না যাই। পাঠক বইটা পড়লেই বুঝতে পারবেন সেটা। মোটকথা, মন ভালো করার জন্য আর প্রাণ খুলে হাসার জন্য হলেও বইটা একবার পড়া উচিৎ। . বই পরিচিতিঃ বইঃ বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা লেখকঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবার মূল্যঃ ১৮০ টাকা (মলাট মুল্য) প্রকাশনীঃ অনুপম প্রকাশনী জনরা: সায়েন্স ফিকশন
Science-Fiction
4
বইয়ের নামঃ থ্রিঃফর্টিসিক্স এএম (3:46 AM) লেখকঃ নিক পিরোগ অনুবাদকঃ সালমান হক ধরণঃ থ্রিলার/রহস্য-রোমাঞ্চ উপন্যাস প্রকাশকালঃ একুশে বইমেলা ২০১৭ প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী পৃষ্ঠাঃ ১২৮ মূল্যঃ ১৫০ টাকা কাহিনী-সংক্ষেপঃ নিক পিরোগের হেনরি সিরিজের ৫ম বই, হেনরি নিজের ভাষাতে বর্নিত বরাবরের মতই। ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬। এই দিনটার জন্যে অপেক্ষা করে আছে সবাই- হেনরি,ইনগ্রিড, ল্যাসি, হেনরির বাবা,বাবার বন্ধু, ইনগ্রিডের কলিগ ও বন্ধু, মারডক, ইনগ্রিডের পরিবার আরো অনেকে ...।কি আছে এই দিনে ? হেনরি বিনস আর ইনগ্রিডের বিয়ে। সেই কনর সুলিভান কে এক মেয়ের হত্যাকারী রূপে দেখা, সেইখান থেকে ইনগ্রিড এর সাথে পরিচয় এবং শেষমেশ আজকে তার পরিণয় হওয়ার কথা...।। কত হাজারো ঝামেলা মিটিয়ে বেচারা মাত্র ১ ঘন্টা সময় গেল বিয়ে করতে। ৩ টা থেকে ৪ টা... এই এক ঘন্টার ভেতরেই সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতেই হবে...।। অবাক হচ্ছেন? বিয়ের মত একটা প্রোগ্রাম, তাও মাত্র ১ ঘন্টায়?? বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হন প্রেসিডেন্ট কনর সুলিভান... যেখানে বাঘের ভয় সেইখানে রাত হয়, এই বাক্য কে সত্য মেনে হেনরির বিয়ের আসরে ঘটে যায় মারাত্মক ঘটনা, কি ঘটে? হেনরির বিয়েটা কি শেষমেশ হয়েছিল???? শেষ হল কি ???? আর সব দিনের মতই ৪ টাও সেদিনও ঘুমিয়ে গেল হেনরি। কিন্তু পরেরদিন ঘুম থেকে উঠেই হেনরি তার বাড়িতে কাউকে পেলো না। কেউ ছিলনা, জনমানবহীন.........।। কি ঘটেছিল সেই রাতে? জানতে হলে পড়তে হবে উপন্যাসের শেষ শব্দ পর্যন্ত , শেষ পাতায় আর বড় একটা বোম্ব আছে পাঠকদের জন্য। পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ থ্রিঃ ফোর্টিসিক্স এএম। অন্যান্য বইটির মত এটি বেশ টুইস্টে ভরা। অনুবাদকের কাজ নিয়ে কোন কিছু বলার নাই বেশ ভালো লেগেছে, তবে নিক পিরোগ সাহেব শেষে এসে একটা রহস্যের সুতো ঝুলিয়ে রেখেছেন…। সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে, তবে হ্যাঁ, প্রথম বইটি যতটা ভাল লেগেছিল , পরের বইগুলো অতটা ভাল লাগেনি, খারাপ লেগেছে সেটাও বলব না। প্রচ্ছদ টা খুব ভাল লাগার মত একটা কাজ...... গল্পটা বেশ ছোট আর তাড়াতাড়ি শেষ হয়েছে বলে মনে হয়েছে, হঠাৎ ই শেষ ...।। মানে হয়ত মাঝে আরো কিছু থাকার কথা, নাই, হেনরির ঘুমের মত – আর জেগে থাকার মত অনেকটা... রেটিং ঃ ৪/৫
Thriller
1
পুরানঢাকায় বড় হওয়া ও বসবাস করার কারনে পুরান ঢাকার ইতিহাস সম্পর্কে জানার আগ্রহ সবসময় কাজ করে।তাই পুরান ঢাকা সম্পর্কিত যেখানে যত বই পাই পড়ে ফেলার চেষ্টা করি।কিন্তু বেশির ভাগ বইই কাঠখোট্টা ইতিহাস অথবা বিশ্বকোষ ধরণের বই।খুব কম বইতেই পুরানঢাকার জীবনযাত্রার ছোয়া পাই।ঢাকা আমার ঢাকা তেমনই একটি বই। বইটিতে তৎকালীন পুরানঢাকার বিভিন্ন জিনিসের বর্ণনা পাই লেখকের নিজের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে।যেমন ঢাকার সর্দারদের গল্প।নবাব বাড়ির মক্তব।ফকির জমিলা প্রাইমারী স্কুল।তখনকার পুরানঢাকার ঈদ আয়োজন।দুরগা পুজা,জন্মাস্টমীর মিছিল।ঢাকায় তখন মোটরগাড়ির শো হত।প্রথম মোটর গাড়ীর শো এর বর্ণনা ও ছবি। ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের ইতিহাস।ঢাকার নাটক,পিঠাওয়ালীর গল্প।যারা শহরে ঘুরে ঘুরে পিঠা বিক্রি করত।এখন র এসব পেশার মানুষ নেই।আছে ঢাকার পেশোয়ারীর গল্প।সে সময়ের ফটোগ্রাফীর দোকান।ডস ব্রাদারস,তারা মসজিদ ও পরীবাগের শাহ সাহেব।ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ কলেজ। পাটুয়াটুলীর কালিবাড়ী।সিরাজদ্দোলা পার্ক। নর্থব্রুক হল। যতীন এন্ড কো যারা বাদ্যযন্ত্র নির্মাণের জন্যে বিখ্যাত।সদরঘাটের জিপিও।এছাড়াও আসে কবি শামসুর রহমানের কথা যাকে লেখক বাচ্চু ভাই বলে ডাকত। ঢাকার বিখ্যাত ফোটোগ্রাফার হিমাংশু দত্ত,ওয়ারীর ডা নন্দী, অমর শিল্পী আব্দুল আহাদ।আর আছে আতরওয়ালার গল্প। অসাধারন পেইন্টার চিনারির ঢাকায় আগমন ও ছবি,চার্লস ডয়লির আকা ছবি, পাগলার গ্লাসি...এবং অবশেষে বিখ্যাত চকবাজারের গল্প এই সবকিছুর বর্ণনাই লেখক তার জীবনের নানা সৃতির মধ্যে দিয়ে দিয়েছেন। বর্ণনা দিয়েছেন অজস্র মানুষ ও ঘটনার।এর জন্যেই যখনই বইটা পরি তখনই এক অদ্ভুত অনুভুতিতে মনটা ভরে থাকে।।পড়তে পড়তে মনে হয় শত বছরের পুরাতন এই রাস্তা গুলা দিয়ে বর্তমানে আমিও হেটে যাই।এইসব দোকান এ এখনও যাই। সেই পুরাতন বাড়ী গুলাও যেন তেমনই আছে। তখন এখানে কারা থাকত।কেমন ছিল এসব মানুষ।আমি নিজেও যেনও সেই সময়ে চলে জাই।সবকিছুই অনেক আপন আর পরিচিত লাগে।...ঢাকাবাসীর জীবনযাত্রা জানার জন্যে ও উপলব্ধি করার জন্যে একটি যথাযত বই ঢাকা আমার ঢাকা।
War
5
আমি কয়েকদিন বাড়িতে ছিলাম। আব্বা খুবই দুঃখ পেয়েছেন। আমি আইন পড়ব না শুনে বললেন, “যদি ঢাকায় না পড়তে চাও, তবে বিলাত যাও। সেখান থেকে বার এট ল' ডিগ্রি নিয়ে এস। যদি দরকার হয় আমি জমি বিক্রি করে তােমাকে টাকা দিব।” আমি বললাম, “এখন বিলাত গিয়ে কি হবে, অর্থ উপার্জন করতে আমি পারব না। আমার ভীষণ জেদ হয়েছে মুসলিম লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। যে পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেছিলাম, এখন দেখি তার উল্টা হয়েছে। এর একটা পরিবর্তন করা দরকার। জনগণ আমাদের জানত এবং আমাদের কাছেই প্রশ্ন করত। স্বাধীন হয়েছে দেশ, তবু মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর হবে না কেন? দুর্নীতি বেড়ে গেছে, খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বিনা বিচারে রাজনৈতিক কর্মীদের জেলে বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে মুসলিম লীগ নেতারা মানবে না। পশ্চিম পাকিস্তানে শিল্প কারখানা গড়া শুরু হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে না। রাজধানী করাচি। সব কিছুই পশ্চিম পাকিস্তানে। পূর্ব বাংলায় কিছু নাই। আব্বাকে সকল কিছুই বললাম। আব্বা বললেন, “আমাদের জন্য কিছু করতে হবে না। তুমি বিবাহকরেছ, তোমার মেয়ে হয়েছে, তাদের জন্য তো কিছু একটা করা দরকার।” আমি আব্বাকে বললাম, “আপনি তাে আমাদের জন্য জমিজমা যথেষ্ট করেছেন, যদি কিছু না করতে পারি, বাড়ি চলে আসব। তবে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া চলতে পারে না। আমাকে আর কিছুই বললেন না। রেণু বলল, “এভাবে তােমার কতকাল চলবে।” আমি বুঝতে পারলাম, যখন আমি ওর কাছে এলাম । রেণু আড়াল থেকে সব কথা শুনছিল। রেণু খুব কষ্ট করত, কিন্তু কিছুই বলত না। নিজে কষ্ট করে আমার জন্যে টাকা পয়সা জােগাড় করে রাখত যাতে আমার কষ্ট না হয়।
Political
3
#রকমারিরিভিউপ্রতিযোগ আমাদের এলাকায় বলে, "মা আদরা পুত আর বাপ আদরী ঝি" অর্থাৎ ছেলেরা মায়ের আদরটা বেশী পায় আর মেয়েরা পায় বাবার। কিংবা যদি সাহিত্যেও খুজতে যাই সেখানেও পাবো, "পৃথিবীতে অসংখ্য খারাপ পুরুষ আছে কিন্তু খারাপ বাবা একটাও নেই" কিংবা "একটা মেয়ে হয়তো সারা জীবন তার স্বামীর কাছে রাণী হয়ে থাকে না, কিন্তু একটা মেয়ে তার বাবার নিকট সারা জীবন রাজকন্যা হয়েই থাকে"। এ থেকেই বুঝা যায় পিতা আর কন্যার সম্পর্ক কতোটা ভালবাসার..... হ্যা, এই আখ্যান এক সম্রাটকে নিয়ে এক রাজকন্যার লিখা, এক পিতাকে নিয়ে এক কন্যার। স্কুলটা বাড়ি থেকে বেশ দূরে। সোয়া কিলোমিটার। ছোট খোকা সেই স্কুল মানে গিমাডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া স্কুলের ছাত্র। তখন চলছে ভর বর্ষাকাল। চারদিকে ফুঁসে উঠছে পানি। নৌকা করে স্কুলে যেতে হয়। একদিন নৌকা দিয়ে স্কুলে থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঘটল এক দুর্ঘটনা। বর্ষার পানিতে নৌকা ডুবে গেল। নৌকার মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিল। খোকা ভরা বর্ষার পানিতে হাবুডুবু খেয়ে কোনমতে পাড়ে এসে উঠল। এদিকে এ খবর দাদির কানে যাওয়া মাত্র তিনি মহা দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে গেলেন। সেদিন থেকে দাদির কড়া ঘোষণা খোকার স্কুলে যাওয়া বন্ধ। গোটা বংশের আদরের দুলাল এক রত্তি সোনার টুকরো নাতি বলে কথা! নাতিকে কলজের টুকরা বলে জ্ঞান করতেন। টুঙ্গিপাড়া থেকে স্কুল বদল করে খোকাকে পাঠানো হলো ওর বাবার কাছে। গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়া হলো তাকে। এরপর খোকার পুরো কৈশোর কেটেছে সেখানেই। শৈশবের গ্রাম, চপলতা, প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো সব মিলিয়ে খোকার ছোটবেলাটা ছিল আর আট-দশটি আটপৌরে বাঙালীর মতোই। সেদিনের সেই ছোট্ট খোকা পরবর্তীতে নিজের প্রজ্ঞা আর দূরদর্শিতা দিয়ে পরিণত হয়েছিলেন মানুষের নেতায়। বাঙালীর স্বপ্নদ্রষ্টায়, বঙ্গবন্ধুতে, স্বাধীনতার স্থপতিতে। বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে অবিস্মরণীয় এক নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। যাঁর উচ্চতা ছাড়িয়ে গিয়েছিল আকাশতক। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর আত্মমর্যাদার নাম। অহংকারের নাম। বঙ্গবন্ধুর সিংহ হৃদয় মানুষের জন্য সবসময় প্রসারিত ছিল। মানুষকে পরম মমতায় নিজের করে নিতে পারার এক ঐশ্বরিক গুণ ছিল তাঁর। আর মানুষও তাঁর কথায় জীবনবাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয় ছিনিয়ে এনে দেখিয়ে দিয়েছিল যে, হে মহান নেতা, তোমার জন্য আমরা সব অসাধ্য সাধন করতে পারি।যুদ্ধদিনে সাড়ে সাত কোটি বাঙালী বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বিশ্বের অন্যতম প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এক অসম যুদ্ধে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখে তাঁর অমোঘ বাণীকে সত্যে পরিণত করেছিল- তাঁর অনেক পরিচয়। একের ভেতর অজস্র। পুত্র, ভাই, স্বামী, চাচা, মামা, দাদা, নানা, শ্বশুর, শুভাকাঙ্ক্ষী , নিকটজন, নেতা কত পরিচয়েই না তিনি পরিচিত। সব পরিচয়ের আড়ালে লুকিয়ে আছে একজন সজ্জন মানুষের প্রতিকৃতি, একজন বিনয়ী মানুষের অবয়ব সর্বোপরি সিংহ হৃদয় ও বাঙালী অন্তপ্রাণ। প্রতিটি পরিচয়ে নিজেকে উজাড় করে মেলে ধরার প্রয়াস রয়েছে। তাঁর এতসব পরিচয়ের বাইরে একটি পরিচয় নিয়ে কৌতূহল চেপে রাখা বেশ কষ্টকর। সেটা হলো পিতা হিসেবে কেমন ছিলেন বঙ্গবন্ধু? এ বিষয়টি জানা যায় তাঁর বড় মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা থেকে। ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থে শেখ হাসিনা অপার মমতায় পিতার প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন। পিতা বঙ্গবন্ধু ছোটবেলায় কেমন ছিলেন তা বর্ণনা দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা লিখছেন, “দাদা আমাদের কাছে গল্প করলেন যে, ‘তোমার আব্বা এত রোগা ছিল যে, ফুটবলে জোরে লাথি মেরে মাঠে গড়িয়ে পড়ত। আব্বা যদি ধারেকাছে থাকতেন তবে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করতেন। আমরা তখন সত্যিই খুব মজা পেতাম। এর পেছনে মজার ঘটনা হলো মাঝে মাঝে আব্বার টিম ও দাদার টিমের মধ্যেও খেলা হতো। আমি যখন ঐ সমস্ত এলাকায় যাই, অনেক বয়স্ক লোকের সঙ্গে পরিচয় হয় যারা আব্বার ছোটবেলার কথা বলেন।” বড় মেয়ে হিসেবে বাবাকে বেশ কাছে থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। রাজনীতিতে তখন বঙ্গবন্ধুর ব্যস্ততা বাড়তে শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্বে, চিন্তা-ভাবনায় হৃদয়বান মানুষের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে উঠত। ‘দাদির কাছে গল্প শুনেছি, যখন ছুটির সময় হতো তখন দাদি আমগাছের নিচে এসে দাঁড়াতেন। খোকা আসবে দূর থেকে রাস্তার ওপর নজর রাখতেন। একদিন দেখেন তাঁর খোকা গায়ের চাদর জড়িয়ে হেঁটে আসছে, পরনের পায়জামা-পাঞ্জাবি নেই। কী ব্যাপার, এক গরিব ছেলেকে তাঁর শত ছিন্ন কাপড়ে দেখে সব দিয়ে এসেছেন।’ ১৯৪৯ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্র সমাজের গড়ে ওঠা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সোচ্চার। এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তাঁর পিতাকে নিয়ে একটি অসাধারণ মানবিক ঘটনার কথা উল্লেখ করছেন। বইটি মূলত ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তার লেখা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ ও সংকলনের সংগ্রহ। বইটি তে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকান্ড এবং একজন সন্তান হয়ে বাবার নৃশংস হত্যাকান্ডের বোঝা বহনের যন্ত্রণা প্রকাশ করেছেন। প্রায় দশটি প্রবন্ধে সাজানো এই বইটিতে শেখ হাসিনা তার লেখনী প্রতিভার অসাধারণ নৈপূণ্য দেখিয়েছেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’র মতো মধুমতি নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠা টুঙ্গপাড়ার সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন আপন মহিমায়। টুঙ্গিপাড়ার সৌন্দর্য তোলে ধরতে গিয়ে লেখিকা বলেছে ‘‘নদীর দুপাশে তাল, তমাল, হিজল গাছের সবুজ সমারোহ। ভাটিয়ালি গানের সুর ভেসে আসে হালধরা মাঝির কণ্ঠ থেকে, পাখির গান আর নদীর কলকল ধ্বনি এক অপূর্ব মনোরম পরিবেশ গড়ে তোলে”। টুঙ্গীপাড়া গ্রামে নদীর পাশে একটি ঘর বানিয়ে জীবনের শেষ সময়গুলো ব্যায় করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এ লেখিকা। বইতে বঙ্গবন্ধু ও তার সেনাবাহিনী এবং কিছু বিপদগামী নরপিশাচদের ন্যাক্কারজনক ১৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বুঝাতে চেয়েছেন, জাতির পিতার হত্যার জন্য তিনি সব সেনাবাহিনীকে দোষারোপ করছেন না। পরাজিতরাই প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে জাতির জনককে হত্যা করেছে।এবং পরবর্তী সময় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে এই হায়নারা কেমন করে আশ্রিত-পালিত হয়েছে তার ঘটনা প্রবাহ আলোকপাত করেছেন। শহীদ জননী জাহানার ইমামের করুণ পরিনতি এবং রাষ্ট্রর তৎকালীন ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতি যে প্রীতি প্রদর্শন তার তীব্র সমালোচনা করেছেন। স্বৈরাচারী আন্দোলনে তার নেতা কর্মীদের নিপীড়ণ এবং পিঠে বুকে গনতন্ত্রের স্লোগান বহনকরী নুর হোসেনের আত্মদান খুব করুণভাবে তোলে ধরেছেন একজন বোন হয়ে। ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ বইটি পড়তে পড়তে পাঠকের মনে গভীর রেখাপাত তৈরি করবে। একজন আটপৌরে বাঙালী কী করে একজন দায়িত্ববান পিতা হয়ে উঠতে পারে এ বই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। এই বইটি পড়ে জ্ঞান উৎসাহী পাঠকরা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে একটি কথা স্বীকার করবেন যে, তিনি একজন অসাধারণ পাঠক। একজন পাঠকই একজন অসাধারণ লেখকে পরিনত হন। জ্ঞান অন্বেষণে লেখিকার আগ্রহ আমাকে মুগ্ধ করেছে। বইটি পড়ে শেখ হাসিনার সাথে আজ নতুনভাবে পরিচিত হলাম। আট দশটা সাধারণ বঙ্গালি মেয়ের মতো টুঙ্গিপাড়ায় পরবর্তীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বেড়ে উঠা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র নায়েক হিসেবে গড়ে উঠার পিছনের ইতিহাসটা যে কোন মানুষকেই উৎসাহিত করবে বলে মনে করছি।
Political
3
বইঃসূর্য দীঘল বাড়ি লেখকঃ আবু ইসহাক প্রথম প্রকাশঃ১৯৫৫ প্রকাশকঃনওরোজ সাহিত্য সম্ভার মূল্যঃ ১০৬টা ধরণঃ চিরায়িত বাংলার উপন্যাস সময় টা দেশ বিভাগের। ১৯৪৭ সালের আগে পরে।নানা চড়াই-উৎরায় পেরিয়ে মাথা গোঁজার ঠায় পেতে জয়গুন তার ছেলে হাসু আর মায়মুন, তার ভাইবউ শফির মা আর শফি ফিরে আসে গ্রামে। মাথা গোঁজে সূর্য দীঘল বাড়িতে। পূর্ব-পশ্চিমদিকে মুখ করা এই বাড়িগুলো বহন করে চলে অভিশাপ। বংশ নির্বংশ হবার অভিশাপ। নিরুপায় এই দুই নারী বাধ্য হয় বিশাল একাকী তাল গাছের নিচে একটু মাথা গোঁজার ঠায় করে নিতে। খাবার মুখে তোলার জন্য কি জীবন এদের। গাড়িতে, ট্রেনে করে দূর-দূরান্ত পাড়ি দেয় এক সের চালের জন্য। হাসু কুলিগিরি করে মায়মুন ঘর সংসার দেখে। জব্বর মুন্সীর স্ত্রী হিসেবে জয়গুনের রাস্তায় খাবারের খোঁজে নামা কেউ ভালো দেখেনা। কিন্তু সে নিরুপায়। তার দ্বিতীয় স্বামী করিম বখশ, ছেলে কাসু কে রেখে মায়মুন আর আরেক কন্যা সহ বের করে দেয়। কোলের মেয়েটি খাবারের অভাবে মারা যায়। দিন এর পর দিন কাসু কে না দেখা মা কাসু কে দেখতে অস্থির হয়ে থাকে। এসবের মাঝেই এই অপয়া বাড়ি বন্ধ করে এক ফকির এসে।বার বার বছর বছর। একক পেতলের কলসী দেবার কথা ছিল। দেয়া হয়ে ওঠেনা। যাদের এক বেলা খাবার জোটে না,তারা পেতলের কলসি জোগান কি দেবে?? আবার ফকিরের কুৎসিত ইংগিত এ সাড়া না দেয়ায় আর বাড়ী বন্ধ করে না ফকির। এ মুখো আর হয়নি। সূর্য দীঘল বাড়ী থেকে দূরে থেকেও কাসু মরতে বসে।কাসু বাঁঁচবে?? সূর্য দীঘল বাড়ীর অভিশাপ কাটিয়ে জয়গুন কি টিকে থাকতে পারবে?? পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ বই এর নাম আরো আগে জানা সেই স্কুলে থাকার সময়, জোঁক গল্প পড়ার সময়। কলেজ উঠে পড়েছিলাম। কুসংস্কার-অন্ধবিশ্বাস এ মোড়া এই উপন্যাস। এভাবেই চলে জয়গুন এর জীবন। দেশ বিভাগ হলে ভেবেছিল তার ক্ষুধার কষ্ট চলে যাবে, যায় না। কেন?? আসলেই কি অভিশপ্ত সূর্য দীঘল বাড়ী??? সূর্য দীঘল নামটা পারসোনালি আমার খুব প্রিয়।কিন্তু এটা যে অভিশাপ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে।
Fiction
0
জহির রায়হানের লেখা সবসময়ই জাদুকরী। প্রচণ্ড শক্তিশালী ছোট ছোট বাক্যে ভাব প্রকাশের মাধ্যমে তিনি পাঠককে সম্মোহিত করে রাখেন। ‘উপন্যাস সমগ্র’ বইটিতে জহির রায়হানের লেখা সাতটি অসাধারণ উপন্যাস স্থান পেয়েছে। উপন্যাসগুলো হল ‘হাজার বছর ধরে’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’, ‘তৃষ্ণা’, ‘কয়েকটি মৃত্যু’, ‘আর কত দিন’ এবং ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’। এই উপন্যাসগুলোর মধ্যে ‘হাজার বছর ধরে’ এবং ‘কয়েকটি মৃত্যু’ উপন্যাস দুটি নিয়ে নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করবো যাতে পাঠক জহির রায়হানের লেখা উপন্যাসগুলো সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন। ১. হাজার বছর ধরে : ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি বাংলাদেশের গ্রাম-বাংলার আবহমানকাল ধরে চলে আসা সাধারণ মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির এক সূক্ষ্ম ও সুনিপুণ আখ্যান। ক্ষণজন্মা কথাসাহিত্যিক জহির রায়হান এই উপন্যাসে দেখিয়েছেন, কোন রকম শক্তিশালী গল্প ছাড়াও শুধুমাত্র গল্প বলার আশ্চর্য নির্লিপ্ত ভঙ্গি এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষুদ্র সাধারণ বাঁক পরম মমতায় তুলে আনার মাধ্যমে কীভাবে একটি উপন্যাসকে কালজয়ী করে তোলা যায়। হাজার বছর ধরে উপন্যাসের কাহিনী আলোচনায় যাওয়ার আগে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এই উপন্যাসটি কেন গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে একটু আলোকপাত করি। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে বাঙালির হাজার বছরের জীবনধারা খুব যত্নের সাথে তুলে আনা হয়েছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার ফলে শেষ দুই দশকে শুধু শহুরে জীবনে নয়, গ্রামীণ জীবনেও আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখন বাংলাদেশের বেশিরভাগ গ্রামেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় কুপি জ্বালানো সন্ধ্যাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। ঘরের দুয়ার পর্যন্ত পাকা-রাস্তা চলে আসায় গরুর গাড়ির ঐতিহ্য আর নেই বললেই চলে। ফলে আজ থেকে আর কয়েক দশক পরে হয়তো আলোচ্য উপন্যাসে বর্ণিত গ্রামের মত আর একটা গ্রামও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সে সময় ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটিই হয়ে থাকবে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্যের অসামান্য দলিল। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে জহির রায়হান একটি পরিবারের মাধ্যমে গ্রাম-বাংলার শত শত পরিবারের বাস্তবতা আমাদের সামনে নিয়ে এসেছেন। এই পরিবারের সদস্যরা আটটি পাশাপাশি ঘরে বাস করে। এরা সবাই সুখে-দুঃখে একে ওপরের পাশে থাকে। কখনও হয়তো এদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বেঁধে যায়। আবার সব ঠিক হয়ে যায়। এই পরিবারের কর্তা মকবুল। এই চরিত্রটির মাধ্যমে লেখক গ্রাম-বাংলার মোড়লের চরিত্রটিকে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। লেখক এই উপন্যাসে আবহমানকালের গ্রাম-বাংলার প্রায় সব দিকই তুলে এনেছেন। এই উপন্যাসে বাল্য বিবাহের প্রসঙ্গ এসেছে, বহু বিবাহের কথা এসেছে। নারীদের অসম্মান করার ব্যাপার উঠে এসেছে, এমনকি বউকে পিটিয়ে মেরে ফেলাও যে তৎকালীন সময়ে এমন অস্বাভাবিক কোন ব্যাপার ছিল না সেটাও লেখক অসাধারণ দক্ষতায় তুলে ধরেছেন। এই বইয়ে সামাজিক কুসংস্কারের কথা উঠে এসেছেন, পরকীয়া প্রেমের কথাও বাদ যায় নি। মোটকথা আবহমানকাল ধরে চলে আসা বাঙালি জীবনের প্রায় প্রতিটি দিকই ঔপন্যাসিক অন্তত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি নিঃসন্দেহে বাংলা-সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এবং জহির রায়হানের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম। ২. কয়েকটি মৃত্যু : জহির রায়হানের লেখা ‘কয়েকটি মৃত্যু’ উপন্যাসিকাটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংযোজন। আমরা প্রতিদিনের জীবনে সব সময় মৃত্যুর বাস্তবতাকে ভুলে থাকি বা ভুলে থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু এই সত্য যখন মানুষের খুব কাছে এসে দাঁড়ায় তখন নিজের জীবন বাঁচানোর জন্যে মানুষ কতটা স্বার্থপর হতে পারে সেই ছবিই লেখক ‘কয়েকটি মৃত্যু’ উপন্যাসিকায় অসাধারণ ভাবে তুলে এনেছেন। আহমদ আলী শেখের পরিবারকে কেন্দ্র করেই এই উপন্যাসিকার কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। আহমদ আলী শেখের সুখের সংসার। তার বড় ছেলে শহরের নামকরা উকিল, মেজ ছেলে ইঞ্জিনিয়ার, সেজ ছেলে পাটের ব্যবসা করে আজকাল ভালোই আয়-রোজগার করছে। তিনি তিন ছেলেকেই সুন্দর, সৎ চরিত্রের তিনটি মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছেন। নাতি-নাতনী দিয়ে তার ঘর ভরা। তার সংসারে কোন রকম কষ্ট নেই, অভাব নেই। তিনি মাঝে মাঝেই পরিবারের সবাইকে এক ঘরে ডেকে নিয়ে এসে তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন। যেন তার সারা জীবনের পরিশ্রমে ক্ষেতে যে ফসল ফলেছে তা দেখছেন। কিন্তু এই সুখের সংসারে হঠাৎ করে একদিন মৃত্যুর ঘণ্টাধ্বনি বেজে উঠলো। তিনি স্বপ্নে দেখলেন তার মৃত আত্মীয়-স্বজন তাকে নিয়ে যেতে এসেছে। ঠিক এ রকমই একটি স্বপ্ন আহমদ আলী শেখের বাবা দেখেছিলেন। এবং তা দেখার পর তিনি ও তার মেজ ছেলে মারা গিয়েছিলেন। এই স্বপ্ন দেখার পর আহমদ আলী শেখ অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত হয়ে সব ছেলে এবং তাদের বউদের ঘরে ডেকে এনে স্বপ্নের কথা বললেন। ছেলেরা মুখে বলল, ও সব স্বপ্ন কিছু না। কিন্তু তাদের মৃত্যু ভয় পেয়ে বসল। বড় ছেলে নিজের ঘরে গিয়ে চিন্তা করতে বসল, সে সারা জীবন শুধু পাপই করে গেছে। পরকালের জন্যে কিছুই করে নি। সে তার বউয়ের কাছে নামাজ পড়ার জন্যে জায়নামাজ চাইলো। ওদিকে মেজ বউ তার ভবিষ্যতের কথা ভেবে মেজ ছেলেকে ইন্সিওরেন্সের টাকা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে বসল। তখন মেজ ছেলে দুনিয়ার নিষ্ঠুর বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারলো। যে পরের মেয়েকে সে এখন সবচেয়ে আপন ভাবছে, সেই মেয়ে তার মৃত্যুর পর কীভাবে খাবে-পড়বে সে চিন্তায় ব্যস্ত। তার মৃত্যু নিয়ে মোটেও চিন্তিত না। এইদিকে বাড়ির অসুস্থ ছোট ছেলেটাও আহমদ আলী শেখের মত একই স্বপ্ন দেখলো। তখন সবাই এই ভেবে আশ্বস্ত হল যে তাহলে বাবা আর ছোট ভাই-ই মারা যাচ্ছে। কারণ আগেরবারও যে দুজন স্বপ্ন দেখেছিল তারাই মারা গিয়েছিলো। সবাই এই ব্যাপারে যখন মোটামুটি নিশ্চিত তখন আহমদ আলী শেখ আবার স্বপ্ন দেখলেন। এবার তাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, তার যে কোন দুইটা ছেলের নাম বলার জন্যে যাদের জান কবচ করা হবে। তখন আহমদ আলী শেখ অত্যন্ত স্বার্থপরের মত বললেন, তার দুইটা ছেলের জান কবচ না করে যেন ঘরে যেই তিনটা বউ আছে তাদের জান কবচ করা হয়। এভাবে মৃত্যুর মত অব্যর্থ বাস্তবতা যখন মানুষের সামনে এসে দাঁড়ায় তখন মানুষ নিজের স্বার্থ কত রকমভাবে সংরক্ষণের চেষ্টা করতে পারে তা লেখক চোখে আঙুল তুলে এই উপন্যাসিকায় দেখিয়ে দিয়েছেন। জহির রায়হানের লেখার সহজাত বৈশিষ্ট্য হল, ছোট ছোট জোরালো বাক্যের ব্যবহার। সেই বিষয়টি এই উপন্যাসিকায় আরও স্পষ্ট ভাবে বোঝা গিয়েছে। আর অসাধারণ সাবলীল বাস্তবধর্মী বর্ণনাভঙ্গি এই বইয়ের গল্পকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে, আরও হৃদয়স্পর্শী করে তুলেছে। ‘কয়েকটি মৃত্যু’ উপন্যাসিকাটি পড়ার পর যে কোন পাঠকই অন্তত কয়েক মুহূর্তের জন্যে স্তব্ধ হয়ে যাবেন। একবার হলেও নিজের মৃত্যু নিয়ে ভাবতে বাধ্য হবেন। পরিশেষে বলতে হয়, জহির রায়হানের লেখা ‘উপন্যাস সমগ্র’ অবশ্যই সংগ্রহে রাখার মত একটি বই।
Fiction
0
বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০ এর তালিকা করলে হয়তো খুব সহজেই প্রথম দিকেই নিজের স্থানটা পাকাপোক্ত করে নিতে পারবে এই উপন্যাসটা। ততকালীন বঙ্গীয় সমাজে হিন্দু মসলমানের টানা পোড়ন কে এক অদ্ভূত জাদুকরী দক্ষতায় লিখে গিয়েছেন লেখক। অসাধারণ!
Fiction
0
Average quality story if compare with other few high strand books from same author. But of course every book will not be the best one. It's worthy as early release on book fair 2016. But for other time I will recommend Phoenix (ফিনিক্স) as that has similar plot but much better story.
Science-Fiction
4
it is very good
Fiction
0
When this book will available in your stock
Political
3
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মে বইঃ ইন্দ্রজাল - হাজার বছরের পিছুটান লেখকঃ জিমি হাইসন প্রকাশনীঃ ঐতিহ্য প্রচ্ছদঃ বেতিবুপ থ্রি থ্রি স্টুডিও (ইতালি) ধরণঃ ঐতিহাসিক উপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৪০ মলাট মূল্যঃ ২৫০ টাকা প্রকাশঃ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯ কাহিনী সংক্ষেপঃ উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র সায়মন বিখ্যাত রোমান প্রত্নতত্ত্ববিদ। বংশপরম্পরায় এ পেশায় নিয়োজিত হওয়া সায়মন হাজার বছরের প্রাচীন নিদর্শনের সন্ধানে পাড়ি জমায় গ্রিসের কাভালোয়। তিন হাজার বছরের পুরনো জিউস মন্দিরের তলদেশে খুঁজে পায় বাক্সবন্দী হয়ে থাকা ব্রোঞ্জ নির্মিত একটি দরজা। যেটিকে দেখলেই অন্যরকম এক মোহে আকৃষ্ট হয়ে যায় সে। শক্ত হাতে আলিঙ্গন করতে ইচ্ছে করে। একসময় সেই দরজা দিয়েই প্রবেশ করে সময়ের ইন্দ্রজালে। ফিরে যায় আঠারোশ বছর অতীতে জুলিয়াস সিজারের সময়ে। সেখানে খুঁজে পায় অপরূপ সুন্দরী ইসাবেলকে। আস্তে আস্তে জরিয়ে যেতে থাকে তার মহামায়ায়। অতীতের মায়া কাটিয়ে সায়মন কি ফিরতে পারে তার সময়ে?! পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ইতিহাস নির্ভর উপন্যাসগুলো বরাবরই প্রিয়। এরসাথে কিছু পৌরাণিক কাহিনী যুক্ত করলে সেটি হয় আরও আকর্ষণীয়। ইন্দ্রজাল উপন্যাসে তারই প্রমাণ দিয়েছেন বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত লেখিকা জিমি হাইসন। এ গল্পের মধ্য দিয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় প্রাচীন রোম শহরে। কল্পনার ক্যানভাসে চিত্রায়িত করা যায় ইসাবেলের অপরূপ সৌন্দর্য, জুলিয়াস সিজারের রক্তাক্ত দেহ, অগাস্টাস সিজারের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ রোমান শাসক হয়ে ওঠাসহ আরও অনেক ঘটনা। গল্পের শেষটায় অনেকেরই মনে পারে "ইস, শেষ না হয়ে আর কিছুক্ষণ চলতো!" সর্বোপরি বইটা খুব ভালো লেগেছে। সময় করে আপনারাও পড়ে দেখতে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে। ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৫/৫ #হ্যাপি_রিডিং
Thriller
1
README.md exists but content is empty. Use the Edit dataset card button to edit it.
Downloads last month
5
Edit dataset card