summary
stringlengths
1
29.6k
genre
stringclasses
7 values
Label
int64
0
6
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৪ মাস : আগষ্ট সপ্তাহ : তৃতীয় পর্ব : ৪ বইয়ের নাম : সাইকো লেখক : রবার্ট ব্লক রূপান্তর : সাজিদ রহমান প্রচ্ছদ : আদনান আহমেদ রিজন প্রকাশনী : আদী প্রকাশন পৃষ্ঠা : ১২৮ মূদ্রিত মূল্য : ২৫০ টাকা রেটিং : ৮/১০ রিভিউ ফেয়ারভিলের এক প্রান্তে পাহাড়ের উপর এক পুরনো বাড়িতে থাকে নরম্যান বেটস। মা'কে খুব ভালোবাসে সে। তাকে নিয়েই তার ছোট্ট পৃথিবী। বাড়ির পাশেই একটা মোটেল চালায় মা-ছেলে। নাম বেটস মোটেল। যদিও নতুন হাইওয়ে হওয়ার পর লোকজন বড় একটা আসে না এদিকে। তবুও মোটেলটা থেকে যা আয় হয় তাতে দুজনের দিব্যি চলে যায়। মায়ের একান্ত বাধ্যগত নরম্যানের জীবন বেশ নির্বিবাদেই কাটছিল। এদিকে মি. লাউরি নামক এক ব্রোকারের অফিসে চাকরি করে সুন্দরী মেরি। জীবনের চরাই উতরাই পার করতে করতে বয়স নেহাত কম হয়নি। তবুও সে প্রেমে পড়েছে। কিন্তু তার কপালটাই যেন পোড়া। যাকে সে ভালোবাসে তার ঘাড়ে আছে মস্ত ঋণের বোঝা। আর ঋণ শোধ না করে সে মেরিকে বিয়েও করতে চায় না। কিন্তু অপেক্ষা করাটা মেরির একদমই পছন্দ হচ্ছে না। তাইতো সুযোগ পাওয়া মাত্রই মি. লাউরির চল্লিশ হাজার ডলার নিয়ে উধাও হয়ে যায় সে। বেরিয়ে পড়ে প্রেমিক স্যাম লুমিসের কাছে ফেয়ারভিলে যাবার উদ্দেশ্যে। কিন্তু ঘটনার শুরু হলো তখনই, যখন মেরি পথ ভুলে গিয়ে পৌছালো নরম্যান বেটসের মোটেলে। হয়ত নরম্যানও জানতো না এরপর কী ঘটতে চলেছে তার জীবনে। এদিকে বোনকে খুজতে খুজতে ছোট বোন লিলা হাজির হলো ফেয়ারভিলে স্যামের কাছে। আর গল্পে আবির্ভাব ঘটলো প্রাইভেট ডিটেকটিভ মিলটন আরবোগাষ্টের। সেও খুজছে মেরিকে। মেরিকে খুজতে খুজতে আরবোগাষ্টও একসময় হাজির হলো বেটস মোটেলে। কিন্তু মেরির মতো তারও আর কোনো খোজ পাওয়া গেল না। আর তারপর ............ আর তারপর কি হলো সেটা জানতে হলে পড়ে ফেলুন রবার্ট ব্লকের এই মাস্টারপিসটি। আশা করি নিরাশ হবেন না। পাঠ প্রতিক্রিয়া: এক কথায় অসাধারণ একটা থ্রিলার। টানটান উত্তেজনায় ভরা প্রতিটি চ্যাপ্টার। অনুবাদটাও যথেষ্ট ভালো। তবে মাঝে মাঝে দু-একটা বনানের ভুল চোখে পড়েছে। তারপরএ বলবো এক বসায় পড়ে ফেলার মতো একটা বই। আর বইয়ের শেষ দিকের একটা টুইস্ট আপনার মাথা ঘুড়িয়ে দেবার পক্ষে যথেষ্ট। - হাসান মাহমুদ রনি
Thriller
1
রতন, পশ্চিম বাংলার একজন উঠতি বক্সার। বিশ্বজয় তার স্বপ্ন। সেই ধারবাহিকতায়ই আজ সে খড়গপুরের বক্সিং-এর আসরে ফাইনালে লড়ছে। অন্যদিনকার মত আজ তার প্রতিপক্ষও হেলাফেলার কেউ নয় ... আজ তার প্রতিপক্ষ ভারতবর্ষের সেরা বক্সার 'সুব্বা'। যে কিনা ভারত থেকে প্রত্যেক বছরই অলিম্পিকে খেলতে যাচ্ছে। রতন বেশ কিছুদিন ধরে খেয়াল করছে, সে যেখানেই খেলতে যাক না কেন - দুটো লোক তার পিছনে থাকবেই। এরা সবসময়ই রিঙের বাইরে বসে শুধুমাত্র রতনের খেলা দেখে। যখন রতনের খেলার পাট চুকে যায়, তখনই লোক দুটো হাওয়া!! রতন ঠিক বুঝে উঠতে পারছেনা, লোকদুটি কি তার উপর নজর রেখে চলেছে? তা কেন হবে? সে তো সামান্য খেলোয়ার বৈ কিছু নয়!! রতনের বাবা, বাঞ্চারাম ভারতবর্ষের একজন বিজ্ঞানী। একসময়ে তার খুব নামডাক ছিল। 'হিটঅ্যামপ্লিকিশন' নামে একটি বস্তু আবিস্কার করতে গিয়ে গত দশ এগারো বছর আগে একবার রহস্যজনকভাবে আঘাত পেয়ে হঠাৎ তার মাথায় গন্ডগোল দেখা দেয়। তারপর থেকে বলতে গেলে পুরোপুরি তার স্মৃতিহানি ঘটে। এখন তার আর কিছুই মনে নেই ... সারাদিন তার একটাই কাজ। দিদির কাছে (রতনের পিসি) রসগোল্লার আবদার করা। একেবারে এইটুকুন বাচ্চা বনে গেছেন বুড়ো বয়সে ... ওদিকে কারা যেন এখনো বাঞ্চারামের বাড়ির আশেপাশে ঘুরাঘুরি করে। দশ এগারো বছর আগে কিভাবে বাঞ্চারাম মাথায় আঘাত পেলেন? বাড়ির আশেপাশে ঘুরাঘুরিই বা করে কারা?? রতনের সন্দেহ করা লোক দুটিই বা কে?? চারপাশে শুধু রহস্য আর রহস্য ... অদ্ভুত সুন্দর একটি বই। আমার ধারণা ছিল এই সিরিজের প্রত্যেকটা বই-ই সম্ভবত "মনোজদের অদ্ভুত বাড়ি" বইটার মতো শুধুমাত্র হাসির খোরাক হবে। কিন্তু না, এটা একেবারেই অন্যরকম। মারাত্মক থ্রিল!! রহস্য!! আর সবচেয়ে বড় কথা, গল্পের শুরু থেকেই স্প্রিড হেভি ... কখন যে বইটা শেষ হয়ে গেল, সত্যি বুঝাতেই পারলাম না!!
Childrens-Book
2
মুক্তিযুদ্ধ কখনো পুরোনো হয় না, হারিয়ে যায় না, তা দীপ্র হয়ে থাকে দেশবাসীর মননে চিন্তায় এবং রক্তের অক্ষরে। মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিচারণায় গৌরবের কিছু নেই, যদি না আমরা এর চেতনাকে, স্বপ্নকে হূদয়ে ধারণ করতে পারি। মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে গত ৩৯ বছরে দেশে প্রচুর বই প্রকাশিত হয়েছে, বেশির ভাগই স্মৃতিচারণামূলক। সেই তুলনায় বিশ্লেষণধর্মী বা গবেষণামূলক বইয়ের সংখ্যা খুবই কম। আর স্মৃতিচারণায় ঘটনার নিরপেক্ষ উপস্থাপনার চেয়ে লেখকের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গিই প্রাধান্য পায়। ব্যক্তিবন্দনার নিনাদে সমষ্টি আড়ালে পড়ে যায়। সে দিক থেকে মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে প্রতিষ্ঠানকেন্দ্রিক আলোচনা ব্যক্তির চেয়ে ‘গণ’ অগ্রাধিকার পাবেন, এটাই প্রত্যাশিত। তবে আমাদের প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকার কথা বলার সমস্যা হলো, অন্যান্য প্রতিষ্ঠানকে খাটো করে দেখা। মুক্তিযুদ্ধসহ বাংলাদেশের প্রতিটি গণতান্ত্রিক আন্দোলন-সংগ্রামে নিঃসন্দেহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা রেখেছে। এর অর্থ এই নয় যে অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের অবদান গৌণ। বরং প্রতিষ্ঠানের বাইরে বিপুলসংখ্যক মানুষ স্বতঃস্ফূর্তভাবে মুক্তিযুদ্ধে শরিক হয়েছেন; যাঁদের চালচুলা নেই, সংগঠন নেই। এঁদের কথা ইতিহাসে লেখা হয় না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: ঢাকা ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান গ্রন্থের অন্যতম সম্পাদক রঙ্গলাল সেন বামপন্থী রাজনীতি করেছেন। তাঁর লেখা ও দৃষ্টিভঙ্গিতে ভদ্রলোকের চেয়ে সাধারণ মানুষের অবদানের কথাই বেশি প্রত্যাশিত ছিল, যা আলোচ্য বইয়ে প্রায় খুব একটা দেখা যায় না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধে প্রাতিষ্ঠানিক ভূমিকা নিয়ে এর আগেও বেশ কিছু বই বেরিয়েছে। মুক্তিযুদ্ধে রাইফেলস বাহিনী, পুলিশ বাহিনীর ভূমিকা নিয়ে আলাদা কাজ হয়েছে। আলোচনায় এসেছে অন্যান্য সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের ভূমিকাও। এ প্রেক্ষাপটে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: ঢাকা ও কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান বইটি নিশ্চয়ই মননশীল পাঠকের মনোযোগ দাবি করে। বাংলাদেশ ও পশ্চিমবঙ্গের খ্যাতনামা শিক্ষাবিদ-লেখকদের পাশাপাশি কয়েকজন নবীন গবেষকের লেখাও স্থান পেয়েছে। আরও কৌতূহলোদ্দীপক হলো, প্রবীণদের লেখায় যথেষ্ট মননশীলতা ও অধ্যবসায়ের ছাপ রয়েছে, যেটি অনেক প্রবীণের লেখায় অনুপস্থিত। বইটিতে মোট ২৫টি প্রবন্ধ আছে। এর মধ্যে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়কে নিয়ে মাত্র একটি, বাকি সবটাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কেন্দ্রিক। কয়েকটি লেখা মুক্তিযুদ্ধের বেশ আগের পটভূমিতে। বইয়ের লেখাগুলোকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথম ভাগ সরাসরি মুক্তিযুদ্ধকেন্দ্রিক, দ্বিতীয় ভাগে মুক্তিযুদ্ধের পটভূমি হিসেবে বিভিন্ন গণসংগ্রামের কথা আছে। তিন সম্পাদক ছাড়াও লেখক তালিকায় আছেন আবুল মাল আবদুল মুহিত, অজয় রায়, রফিকুল ইসলাম, সনত্ কুমার সাহা, মহিউদ্দিন আহমদ, কামাল হোসেন, বোরহানউদ্দীন খান জাহাঙ্গীর, কামাল হোসেন, কাবেরী গায়েন, কে এম মহসীন, আতাউস সামাদ, কালী রঞ্জন শীল, গোপাল কৃষ্ণ নাথ, মো. আনোয়ার হোসেন, স্বদেশ রায় প্রমুখ। কিরণশঙ্কর সেনগুপ্তের ‘সংস্কৃতিকেন্দ্র: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’, অমূল্য ভূষণ সেনের ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও বাংলার বিপ্লবসাধনা’, রঙ্গলাল সেনের ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্ররাজনীতির প্রথম পঁচিশ বছর: মধুদার বাবা আদিত্যের আমল’-এর সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের সম্পর্ক অত্যন্ত দূরবর্তী। তা সত্ত্বেও এগুলোর ঐতিহাসিক মূল্য আছে। সেই সঙ্গে বুদ্ধির মুক্তি আন্দোলন নিয়ে একটি লেখা থাকলে সংকলনটি আরও সমৃদ্ধ হতো। সম্পাদক হিসেবে যাঁদের নাম ছাপা হয়েছে তাঁরা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক ও বর্তমান শিক্ষক। অবশ্য বইয়ের কিছু দুর্বলতার কথা সম্পাদকত্রয় ভূমিকায়ই স্বীকার করে নিয়েছেন। সংকলিত ২৩টি প্রবন্ধ দুটি গ্রন্থ, তিনটি স্মরকগ্রন্থ, একটি সাময়িকী ও একটি দৈনিক পত্রিকা থেকে নেওয়া হয়েছে। আর নতুন প্রবন্ধ হিসেবে যেটি ছাপা হয়েছে, সেটিই বইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রতিভাত হয়েছে। জগন্নাথ হল ও ইকবাল হলের কথা জানলেও আমরা জানি না অন্যান্য হলে সেদিন কী ঘটেছিল। তুহিন রায়ের লেখাটিতে তার বিশদ বিবরণ আছে, আছে ক্যাম্পাসে নিহত শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মচারীদের তালিকাও। এসব তথ্য নতুন প্রজন্মের পাঠকদের জন্য খুবই জরুরি। সে কারণে নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও বইটির গুরুত্ব অস্বীকার করা যায় না। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ: ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে পাকিস্তানিদের গণহত্যার বিস্তারিত বিবরণ রয়েছে। কাবেরী গায়েনের ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের জাতিকে বারবার পথ দেখাতে হয়েছে’, রফিকুল ইসলামের ‘একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’, অজয় রায়ের ‘আমাদের মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা শ্বিবিদ্যালয়’, আবুল মাল আবদুল মুহিতের ‘বাংলাদেশ জাতি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়’ প্রবন্ধও পাঠকচিত্তকে নাড়া দেবে। এ ধরনের বইয়ের সম্পাদকদের যে মনোযোগ ও পরিকল্পনা থাকা দরকার, বইটিতে এর কিছুটা হলেও অনুপস্থিতি লক্ষ করা যায়। শেষে দুটি স্মৃতিকথা জুড়ে দেওয়া হয়েছে। কালী রঞ্জন শীলের ‘পঁচিশে মার্চে জগন্নাথ হলের সেই ভয়াল রাতের স্মৃতি’ ও গোপাল কৃষ্ণ নাথের ‘২৫শে মার্চের কালরাতে জগন্নাথ হল’। যা বহুল পঠিত। এ ধরনের বইয়ে লেখকদের পরিচয় থাকা জরুরি। কিন্তু সম্পাদকত্রয় সেই কষ্টটুকু করেননি। সংকলনগ্রন্থে যাঁদের লেখা সন্নিবেশিত হয়েছে, তাঁরা প্রায় সবাই কীর্তিমান। কেউ মুক্তিযুদ্ধে সরাসরি অংশ নিয়েছেন, কেউ নানাভাবে সহায়তা করেছেন। কেউ কেউ জেল-জুলুমও সহ্য করেছেন। আবার সম্পৃক্ত থাকার কারণে নিজের বা সহযাত্রীদের ভূমিকার কথা বেশি এসেছে। মুক্তিযুদ্ধে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা জীবন দিয়েছেন—এ কথা যেমন সত্য, তেমনি অনেক শিক্ষক-শিক্ষার্থী একাত্তরে ক্লাস করেছেন তাও অসত্য নয়। মুক্তিযোদ্ধা শিক্ষক ও শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুব বেশি নয়। এটি আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সার্বিক দুর্বলতাও বটে। সম্পাদকদের দাবি অনুযায়ী, বইটিতে মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অবদান সম্পর্কে পাঠক মোটামুটি ধারণা পেলেও, কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে মাত্র একটি রচনায় তাদের অতৃপ্তি থেকেই যাবে। সেদিন পশ্চিমবঙ্গ বিশেষ করে কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা যেভাবে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন, যেভাবে এপারের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের আশ্রয় দিয়েছিলেন তার তুলনা মেলা ভার। বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁদের অতিথি শিক্ষক হিসেবে নিয়োগও দিয়েছিলেন। বাংলার বাইরে বিভিন্ন রাজ্যে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে জনমত গড়ে তুলেছেন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক খুব কম বইয়ে এসবের উল্লেখ থাকে। অনেকে ভাবেন প্রতিবেশী সুহূদদের অবদানের কথা স্বীকার করলে নিজেদের মাহাত্ম্য কৃতিত্ব খাটো হয়ে যাবে। সে দিক থেকে প্রবন্ধটির আলাদা গুরুত্ব রয়েছে। নানা সীমাবদ্ধতা সত্ত্বেও সম্পাদককে ধন্যবাদ জানাই আগের প্রকাশিত ও অপ্রকাশিত লেখা নিয়ে এ রকম একটি সংকলন প্রকাশের জন্য। ভবিষ্যতের ইতিহাস রচয়িতাদের জন্য এটি আকরগ্রস্থ হিসেবে বিবেচিত হবে।
War
5
"বর্তমান" খণ্ড পড়ার পর থেকেই অপেক্ষার পালা শুরু নেক্সট খণ্ডের। ধারণা ছিল "ভবিষ্যৎ" প্রকাশিত হবে। কিন্তু লেখক বলেছিল এবার প্রকাশিত হবে "অতীত"। যাই হোক বই কিনেছি অনে...ক পরে। জমজমাট কাহিনীর অপেক্ষায় থাকলেও বর্তমানের মত ফিলিংস আসলো না। হয়তোবা "অতীত"-টা অতীতের তাই ফিলিংসটাও অতীতের মতই কিছুটা ঝপসা হয়ে গিয়েছে! তবে কাহিনীর প্লট দারুণ সেটা আবারও বলছি। লেখক যেভাবে চেঙ্গিস খান, অ্যালেকজান্ডার, আটিলা দ্য হান -দের টেনে এনে আধুনিককালের সাথে সামঞ্জস্য রেখে চিত্রায়িত করেছেন তা আবারও প্রশংসা রাখে। পরিশ্রম কম হয়নি। লিখার চাইতে তথ্য সংগ্রহে শ্রম দিতে হয়েছে অনেক বেশি। এসব শাসকদের ইতিহাস কয়জনই বা জানে? যতটুকু ব্যাখ্যা দিয়েছেন লেখক দরকার ছিল সবার জন্যই। বইয়ের তিন চ্যাপ্টারেই সামঞ্জস্য ছিল কিন্তু ফিনিশিংটা আরও চটকদার লাগতো। আবার তাহলে অপেক্ষার পালা শুরু হল, দেখা যাক মীরানা মোরেসের ভাগ্যে কি ঘটলো?
Thriller
1
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই- কনফেশন্স লেখক-কানায়ে মিনাতো অনুবাদ-কৌশিক জামান ধরণ-থ্রিলার পৃষ্ঠা-১৯২ মূল্য-২০০ প্রথম প্রকাশ- অগাস্ট ২০১৭ প্রকাশনী-বাতিঘর প্রচ্ছদ- ডিলান রেটিং-৫/৫ অনুবাদ রেটিং-৫/৫ বইয়ের শুরু স্কুল শিক্ষিকা মরিগুচির ক্লাসের বাচ্চাদের সাথে গল্প বলা দিয়ে। সত্যি বলতে বিষয়টা খেঁজুরে গল্প নয়। কিছুদিন আগে মরিগুচির একমাত্র মেয়ে মানামি এই স্কুলের সুইমিংপুলে ডুবে মারা গেলে সবাই এটাকেকে নিছক একটি দূর্ঘটনা হিসেবেই ধরে নেয়।পত্রিকা গুলোও স্বাভাবিক দূর্ঘটনায় মৃত্যু বলে ছেপে দেয়। অথচ মরিগুচি একসময় বুঝতে পারেন তার কন্যার এটা স্বাভাবিক মৃত্যু নয়। তাহলে! স্বাভাবিক মৃত্যু যদি না হয়, অবশ্যই এটা একটা খুন! তবে এই বাচ্চা একটা মেয়ের সাথে কার কি রকম শত্রুতা ছিলো যে, সে কিনা মৃত্যুটাই তার শাস্তি হিসেবে বেছে নিলো! যাই হোক, মরিগুচি যখন বুঝতে পারলেন তার মেয়ে খুন হয়েছে, তখন তিনি খুনিকে খুঁজে বের করার চেষ্টা করলেন এবং পেয়েও গেলেন একসময়। একজন মায়ের পক্ষে তার একমাত্র সন্তান হারিয়ে যাওয়ার বিষয়টা ভয়াবহ বলা চলে। সে অবস্থায় তিনি যখন শিউর হলেন খুনি কে বা কারা তখন কি তিনি তাদের ছেড়ে দিবেন? নাহ, তা কখনই না। শাস্তি তো তাদের পেতেই হবে। আর এই শাস্তি দেওয়ার প্রক্রিয়া করলেন তিনি একেবারে ভিন্ন উপায়ে! মরিগুচি তার ছাত্রদের মাঝে সেই গল্পটাই বললেন, কিভাবে তার মানিক রতন মানামিকে হারিয়েছেন, কে বা কারা করেছে সেই কাজ আর তাদের জন্য তিনি কি শাস্তির বিধান রেখেছেন। মরিগুচির সেই ভয়াবহ বীভৎস শাস্তি প্রক্রিয়া কি হতে পারে তা কল্পনার অতীত। এই ব্যপারে জানতে পাঠক কে কনফেসন্স এর পাতা উল্টে যেতে হবে প্রথম থেকে শেষ অবধি। পুরো বইটা বেশ কয়েকটা ভাগে বিভক্ত। প্রতিটা ভাগে আলাদা আলাদা ব্যক্তির স্বাকারোক্তি বলা যায়। প্রথম থেকে দেখলে বেশ স্বাভাবিক ভাবে মরিগুচির কথা বলা দিয়ে শুরু, এবং একের পর একেক জনের বক্তব্য। এবং তা এমন ভাবে বর্ণিত যাতে করে অন্য চরিত্রগুলো কে স্পষ্ট ভাবে চেনা যাচ্ছিলো। যেহেতু মরিগুচি একজন শিক্ষক এবং তার মেয়েকে যারা খুন করেছে তারা মরিগুচির ছাত্র, এক দৃষ্টিতে দেখতে গেলে তিনি মহান হতে পারতেন। কিন্তু একজন মায়ের দৃষ্টিকোন থেকে দেখার ফলে এটা কখনই সম্ভব নয়। তার জন্য খুনির শাস্তি অবধারিত। এখানে এসে আমি নিজেও প্রস্তুত থেকেছি খুনিদের শাস্তি যতোটা কঠিন হবে ততটাই পরিতৃপ্তি পাবো বই শেষ করে। কিন্তু যখন আলাদা আলাদা করে যার যার নিজের বক্তব্য গুলো পড়ছিলাম, তখন কিছুটা শীতলতা এবং তাদের আসন্ন বিপদের কথা ভেবে শংকিত ছিলাম। এই মুহূর্তে মস্তিষ্কের এক পার্ট বলছিলো, তাদের শাস্তি হোক, আরেক পার্ট বলছিলো এতোটা কঠোর না হলে হয় না! এই দুল্যমান অবস্থা নিয়ে পৃষ্ঠা গুলো উল্টে যাওয়া একজন পাঠকের জন্য কতো টা বিপদের তা যিনি সেই অবস্থায় অসীন একমাত্র তিনিই টের পাবেন। বইয়ের শেষ পাতাটা পর্যন্ত গিয়েছি শুধু মাত্র এর পরে কি হলো এতটুকু জানার জন্য। কিন্তু অবাক করা ব্যপার হলো যেখানে লেখক সমাপ্তি টেনেছেন। সমাপ্ত লেখার পরও আমার এই জানার আকাঙ্ক্ষা কমলো না! কনফেশন্স আগাগোড়া একটা থ্রিলার কিন্তু থ্রিলারের আমেজ ভয়াবহ আকারে ধরা পরবে শেষের বেশ কয়েকটা পাতায়। আরো একটা বিষয় চোখে লাগার মতো, তা হলো আপনি প্রথম কয়েক পাতায় খুন হয়ে যাওয়ার সবটুকু রহস্য মরিগুচির বক্তব্যে জেনে যাবেন। তবুও কেন এই মার্ডারমিস্ট্রি আপনাকে শেষ করতে হবে? করতে হবে কারন, এই বইয়ের পুরো থ্রিলিংটা খুনে নয়, খুনের পর প্রতিশোধে। এক কন্যাহারা মায়ের প্রতিশোধের গল্প। যাতে আছে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আরো কিছু গল্প। লেখকের এটাই আমার পড়া প্রথম বই। তবুও বলা যায়, যে কারন উপস্থাপন করে অনুবাদক বইটা অনুবাদ করেছেন। আমি যেন সত্যি সেটা উপলব্ধি করতে পেরেছি। বিষয়টা হচ্ছে এমন, আগের সময় গুলোতে ছেলে-মেয়েদের মানুষ করতে মা বাবার এত শ্রম দিতে হতো না। তাদের প্রতি এতো দেখভাল বা সতর্ক থাকতে হতো না। সারাদিন দুষ্টুমীর পর পড়াশোনা ঠিক থাকলে সাতখুন মাফ। হয়ত দুচারটা কিল চড় থাপ্পর গিলতে হয়েছে। তার বেশি নয়। কিন্তু দিন যতই এগিয়ে যাচ্ছে বাচ্চাদের মানুষ করা ঠিক ততটাই কঠিন হচ্ছে। আর এটার জন্যই বাবা মায়েরা সন্তানের চারপাশে বেড়ি লাগাচ্ছেন। কোথায়, কখন কি করছে পুরো ২৪ ঘন্টা তাদের উপর নজর রাখছেন। তবুও ছেলেমেয়েরা সব থেকে বেশি বিপথগামী হচ্ছে। এবং তাদের সে অপরাধের সাথে যুক্ত হওয়ার অভিনব যে কারন বা কৌশল তা সত্যিই বেশ ভীতিকর! আর বইটা পড়ার পর পাঠকও একমত হবেন এই ব্যপারে যে, এখানকার বাচ্চাদের মাঝে "হিরো হওয়ায় এখন আর কোনরূপ কৃতিত্ব নেই পুরো কৃতিত্ব ভিলেন হওয়ার মাঝে!" যা বেশ ভয়ংকরও বটে! কনফেশন্স পড়ে এই ভয়টা আপনাকে আরো বেশি ঝাঁকিয়ে ধরবে। কানায়ে মিনাতো কে বলা হয়, "কুইন অব ইয়ামিসু"। এটা হলো থ্রিলারের একটা ধারা যেখানে মানব-প্রকৃতির অন্ধকার দিকটা তুলে ধরা হয়। আর এই ধারার উপন্যাস "কনফেশন্স"। এটা তার প্রথম উপন্যাস হলেও জাপানে বেস্ট সেলারের মর্যাদা পায়। পশ্চিমে এর নাম দেয়া হয় "গন গার্ল অব জাপান"। ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল এই বইটিকে ২০১৪ সালে সেরা দশটি থ্রিলার উপন্যাসের তালিকায় স্থান দেয়। কনফেশন্সকে "অ্যালেক্স মারউড" বলেন, 'জাপানের কিশোরদের উচ্ছন্নে যাওয়ার একটি ডার্ক, ডিস্টপিক গল্প।' এই বই পড়ার পর যাকে কৃতজ্ঞতার সাথে ধন্যবাদ দিতে ইচ্ছা হয় তিনি হলেন "কৌশিক জামান"। নরওয়েজিয়ান উড পড়ার পরেই আমি বেশ ভক্ত বনে গিয়েছিলাম। কিন্তু উনি যে সেই ধারা আরো বেশি উন্নতির পর্যায়ে নিয়ে গেছেন, তা কনফেশন্স পাঠকেরা নিসংন্দেহে স্বীকার করবেন। ভাষা একেবারে সরল, সহজ করে লিখেছেন তিনি। আমার মনে হয়েছে প্রতিটা শব্দকে তিনি ঠিক ঠিক জায়গায় ঠিক রেখে বেশ সাবলীলতার সাথে অনুবাদ করেছেন! আর তাই কঠিন বা কোন প্রকার কাট্টাকোট্টা প্রকৃতির অসামাঞ্জস্য মনে হয়নি কোথাও! প্রচ্ছদটা দেখে প্রথম প্রথম একটা গম্ভীরতা কাজ করবে। কিন্তু শেষ করার পর আমি নিশ্চিত, গল্পের সাথে পাঠক এর বিরাট মিল পেয়ে যাবেন। তাতে করে প্রচ্ছদটাও আপনার কাছে হয়ে উঠবে অর্থবহ! সবশেষে, বইয়ের ভাষায় 'সারাবিশ্বে প্রশংসিত হওয়া আরেকটি জাপানি থ্রিলার 'কনফেশন্স' পাঠককে ভিন্ন ধর্মী সাসপেন্সের সাথে পরিচয় করিয়ে দেবে।" আপনাকেও সে ব্যপারে আহ্বান জানালাম। রকমারি লিংক- https://www.rokomari.com/book/149673/কনফেশন্স?ref=srbr_pg0_p0
Thriller
1
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ যকের ধন লেখকঃহেমেন্দ্রকুমার রায় প্রকাশনীঃবিশ্বসাহিত্য কেন্দ্র ধরনঃচিরায়ত উপন্যাস মূল্যঃ৯০ টাকা . প্রধানঃকুমার, বিমল,করালী মুখুয্যে, আর অনেক চরিত্র দেখা যাবে বই, তবে এরাই কেন্দীয় চরিত্র। . #মড়ার_খুলি বইটার শুরু একটা মড়ার খুলিকে নিয়ে।বইয়ের কেন্দ্রীয় চরিত্র কুমার এর ঠাকুরদাদা মারা গেলে তার সোনার সিন্ধুকে অন্যান্য জিনিসের সাথে একটি ছোট বাক্স ও পাওয়া যায়।দামি জিনিস ভেবে সেটা তারা খুলে। কিন্তু খোলার পর শেখানে পাওয়া যায় একখানা পুরানো পকেট-বুক,আর একখানা ময়লা-কাগজে-মোড়া কী একটা। কাগজ খানা খোলার পর সেখানে একটা মড়ার খুলি দেখা গেল।কুমার এর মার ভয়ের কারণে সেটা তুলে বাড়ির পাশের একটা খানায় ফেলে দেওয়া হয়। . পাড়ার করালী মুখুয্যে বাবু মড়ার খুলির কথা জানলে সেটা চুরি করার জন্য ওঠে পরে লাগে। . কুমার এর মা যখন তাকে এসে বললেন রাতে চোর আসে তাদের বাড়িতে আর চুর শুধু তার ঠাকুরদাদার চন্দনকাঠের বাক্স নিয়ে গেছে। এটা শুনে সে অবাক হয়।সিন্ধুকে এত জিনিস থাকতে চোর খালি বাক্সটা নিয়ে গেল কেন? তখন তার মনে পরে এটার কথা সে করালীবাবুকে বলেছিল তিনি বেশ উত্তেজিত হয়েছিলেন এটার কথা শুনে।তবে কি এই বাক্সের মধ্যে কোনো রহস্য আছে? কি তার রহস্য? সেটা জানার জন্য বাড়ির খানা থেকে খুলিটা তুলে আনে সে এবং খুলির এক দিকে কিছু অংক দেখতে পায়।অদ্ভুত এই অঙ্কের মানে কি? কিন্তু সে মাথামুণ্ডু কিছুই বুঝে উঠতে পারে না। হঠাৎ তার মনে পরে ঠাকুরদাদার পকেট-বইয়ের কথা। পকেট বইখানা পরে সে বুঝতে পারে যে তার ঠাকুরদাদা কোনো গুপ্তধন এর সন্ধান পেয়েছিলেন। বয়স হয়ে যাবার কারণে সেটা তিনি তুলে আনতে পারেনি। . কুমার তখন বুঝতে পারে না সে কি করবে। কুমার সবে মাত্র সেকেন্ড-ইয়ারে পড়ছে।জীবনে কখনো কলকাতার বাইরে যায়নি।সে কেমন করে গুপ্তধন এর গুহা খোজে বার করবে।হঠাৎ তার মনে পরে বিমল এর কথা। . #বিমলঃবিমল কুমারের প্রাণের বন্ধু, তারা দুজন এক পাড়াতেই থাকে।তার চেয়ে বছর-তিনেকের বড়, এ বৎসর বি.এ. দেবে।বিমল খুবই চালাকচতুর ছেলে। তার গায়ে অসুরের মতন শক্তি, রোজ সে কুস্তি লড়ে।তার উপর এই বয়সে সে অনেক দেশ বেড়িয়ে এসেছে। বিমল তার মাথা খাটিয়ে অংক গুলার মানে খুজে বার করে এবং সিদ্ধান্ত নেয় সে এই ব্যাপারটার শেষ দেখে ছাড়বে। . কুমার প্রথমে অজানা দূর্গম জায়গায় যেতে মানা করলে শেষ পর্যন্ত রাজি হয় বিমল এর সাথে যেতে। . এতদিনের পুরানো খুলি আর সেই সাধারণ কথা লিখা পুরানো পকেট-বুক নিয়ে শুরু হল কলকাতা থেকে আসাম পর্যন্ত যাত্রা।পদে পদে বিপদে মোড়া দারুন এক অভিযান।বাঙালী ঘরের সাধারণ ছেলেরা কি পাবে আদি রাজার গুপ্তধন এর সন্ধান?? জানতে হলে পড়তে হবে হেমেন্দ্রকুমার রায় এর যকের ধন বইখানা। . #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃএকটি অসাধারণ এডভেঞ্চার উপন্যাস। যকেরধন এমন একটি উপন্যাস যা একবার পড়তে শুরু করলে শেষ না করে উপায় নেই।বিশেষ করে এডভেঞ্চার প্রেমীদের জন্য বইটা অসাধারণ।আমার পড়ে ভাল লেগেছে আশা করি আপনাদের ও ভাল লাগবে। হাপি রিডিং....
Thriller
1
চারপাশের এনভাইরনমেন্ট খুব ভালভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। বইটা পড়লে মনে হয় আমিও গল্পটার সাথে নিরবে এগোচ্ছি। আরও লিখে যান।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #ডিসেম্বরঃ (১১) বইঃ দীপু নাম্বার টু লেখকঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবাল প্রকাশনীঃ সময় প্রকাশন ধরণঃ কিশোর এডভেঞ্জার উপন্যাস রকমারি মূল্যঃ ১১০ টাকা . একই ক্লাসে একই নামের দুজন থাকলে একটু ঝামেলা হয়।এক্ষেত্রে দুজনকে আলাদা আলাদা ভাবে চেনার জন্য ব্যবস্থা নিতে হয়।দীপুদের ক্লাসেও দীপু নামে আরেকজন ছেলে থাকায় একটু সমস্যা হচ্ছিল।তাই তাদের সহজে চেনার জন্য তােদর ক্লাস টিচার নামের পরে নাম্বার করে দেন।একজন দীপু নাম্বার ওয়ান,অপরজন দীপু নাম্বার টু।গল্পের মূল চরিত্র দীপু নাম্বার টু হওয়ায় বইটির নামও দীপু নাম্বার টু রাখা হয়েছে। . রিভিউঃ চাকরির খাতিরে দীপুর বাবাকে প্রতি বছর ছুটে বেড়াতে হয় এক জেলা থেকে অন্য জেলায়,বাবার সাথে দীপুকেও তাই ছুটে বেড়াতে হয় এক স্কুল থেকে অন্য স্কুলে।যদি কাউকে বছর বছর স্কুল পাল্টাতে হয় তবে তার কেমন লাগবে?নিশ্চয় ভাল লাগবে না।নতুন পরিবেশ,নতুন শিক্ষক,নতুন বন্ধুদের সাথে মানিয়ে নেওয়া বেশ সময়ের ব্যাপার।দীপুরও ভালো লাগেনা।নতুন ক্লাসে এসে সবার সাথে পরিচিত হওয়াটা খুবই কষ্টের এবং ভাল বন্ধু বের করতে দেরি হয়।সে এখন ক্লাস এইটে।এই পর্যন্ত সে ৮ টি স্কুল পাল্টিয়েছে।তার বাবা এবার একটি পাহাড়ে ঘেরা অঞ্চলে বদলি হয়েছেন।এখানের এক স্কুলে দীপু ভর্তি হয়।প্রথমদিনেই নতুন স্কুলের সবাইকেই দীপুর ভালো লেগে যায়।মাস্টার মশাইকে প্রথমে একটু রাগী মনে হলেও উনাকে ভাল লাগে।সবার সাথেই দীপুর ভাব জমে যায়।শুধু একজন ছাড়া।তার নাম তারেক।সে নিজেকে গুণ্ডা টাইপ ভাবতে পছন্দ করে।ক্লাসের সকলে তারেককে মনে ঘৃণা করলেও সামনে কিছু বলতে পারেনা,ভয় পায়।প্রথমদিনই তারেকের সাথে দীপুর ঝামেলা বেধে যায়।দীপু মাথায় চাটি মেরে উল্টাপাল্টা কথা বলে।তারেক এখনই সিগারেট খাওয়া শিখেছে।একদিন রাস্তায় তারেক দুই বন্ধুসহ দীপুকে প্রচুর মারে। কিন্তু একসময় সেই মারমুখী তারেকের সাথেই দীপুর গভীর বন্ধুত্ব হয়ে যায়।তারেক আস্তে আস্তে ভালো হয়ে যেতে থাকে।দীপু জানতে পারে তারেকের পারিপার্শ্বিক অবস্থা।কিন্তু কিভাবে সম্ভব হলো এটা? দীপু তার বাবার সাথে থাকে।ছোটবেলা থেকে জানতে পারে দীপুর মা মারা গিয়েছে কিন্তু একদিন তার বাবার কাছ থেকে জানতে পারে তার মা মারা যায়নি।তাহলে তার মা কোথায়??দীপু কি পারবে তার মায়ের সাথে দেখা করতে? তারিক তার বন্ধুকে জানায় সে গুপ্তধন খুঁজে পেয়েছে।শুনে দীপু উত্তেজিত হয়ে পড়ে।ক্লাসের অন্য বন্ধুদের নিয়ে যায় তা উদ্ধার করতে।কিন্তু সেখানে বিদেশী স্মাগলারদের কাছে ধরা পড়ে তারিক।দীপুরা কি পারবে তারিককে স্মাগলারদের কাছ থেকে উদ্ধার করতে?পারবে স্মাগলারদের পুলিশের কাছে ধরিয়ে দিয়ে গুপ্তধন তাদের হাতে তুলে দিতে? . পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ জাফর ইকবালের খুব বেশি বই আমার পড়া হয়নি।মোট চারটা পড়েছি।আমি তপু,ও,দীপু নাম্বার টু,হিমঘরে ঘুম ও অন্যান্য।তার মধ্য আমি তপু ছিল অসাধারণ।কারণ বইটা আমি সঠিক সময়ে পড়েছিলাম।আমার মনে হয় কিছু বই আছে যেগুলো পড়া উচিত,না হলে সেগুলোর সঠিক মজা,ভালোলাগা পাওয়া যায়।দীপু নাম্বার টু বইটাও তাই।এটা একটা কিশোর উপন্যাস।তাই এটা কিশোর বয়সীদের জন্য উপযুক্ত।আমি সাম্প্রতি বইটা পড়েছি,আমার কাছে মোটামুটি ভালোই লেগেছে।দীপু চরিত্রটা আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে।আমার মনে হয় দীপুর কাছ থেকে আমাদের অনেককিছু শেখার আছে।অনেকে বলে উপন্যাসটি প্রচুর কষ্টের।তবে আমার কাছে অতটা কষ্টেরর মনে হয়নি।কিছু জায়গায় ইমোশন ছিল,তবে অতি কষ্ট না।তবে মজাও ছিল।আমার বেশ ভালো লেগেছে। রেটিং:- ৪.৫/৫ রকমারি লিংকঃ https://www.rokomari.com/book/48763/দীপু-নাম্বার-টু
Childrens-Book
2
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ রিভিউ নংঃ৬ বইঃমুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস লেখকঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল মুল্যঃ১০ টাকা লেখক পরিচিতিঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল (জন্ম: ২৩ ডিসেম্বর ১৯৫২) হলেন একজন বাংলাদেশী লেখক, পদার্থবিদ ও শিক্ষাবিদ। তাকে বাংলাদেশে বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী লেখা ও জনপ্রিয়করণের পথিকৃৎ হিসাবে গণ্য করা হয়। এছাড়াও তিনি একজন জনপ্রিয় শিশুসাহিত্যিক এবং কলাম-লেখক। তার লেখা বেশ কয়েকটি উপন্যাস চলচ্চিত্রে রূপায়িত হয়েছে। তিনি শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের একজন অধ্যাপক এবং তড়িৎ কৌশল বিভাগের প্রধান হিসেবে দায়িত্ব প্রাপ্ত ছিলেন। কাহিনী সংক্ষেপেঃ আমাদের মাতৃভূমির জন্য যে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়েছিলো তার ইতিহাস গভীর আত্মত্যাগের ইতিহাস। অবিশ্বাস্য সাহস ও বীরত্বের ইতিহাস। যখন কেউ এই আত্মত্যাগ আর বীরত্বের কথা জানবে তার বুকে জন্ম নিবে দেশের জন্য গভীর ভালোবাসা আর মমতা। আর মাত্র এক ফর্মার পুস্তিকায় আমাদের গৌরবময় স্বাধীনতার ইতিহাস তুলে ধরার দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন মুহম্মদ জাফর ইকবাল। আমাদের জাতীয় ইতিহাসের শ্রেষ্ঠতম অধ্যায় হলো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ। এই মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে জন্মলাভ করে স্বাধীন সার্বভৌম বাংলাদেশ।পাকিস্তান নামের রাষ্ট্র গঠনের প্রস্তাব করা হয়। ১২ আগস্ট প্রকাশিত র্যাডক্লিপ রোয়েদাদে পূর্ব বঙ্গ ও পশ্চিম বঙ্গেঁর মধ্যে সীমানা আনুষ্ঠানিকভাবে নির্ধারিত হয়। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠা হলো ১৯৪৭ সালের ১৪ আগস্ট। পূর্ব বাংলা হয় পাকিস্তানের অংশ-পূর্ব পাকিস্তান। পূর্ব থেকে জনগণ আশা করেছিলেন, এবার তাঁদের আশা-আকাঙ্খা পূরণ হবে। তাঁদের প্রত্যাশিত স্বাধীনতা নতুন রাষ্ট্রে প্রতিষ্ঠিত হবে। উন্নত জীবনের অধিকারী হবেন। কিছুদিনের মধ্যেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ অনুভব করলেন, তাদের প্রত্যাশা পূর্ণ হওয়ার নয়। পাকিস্তানের শাসকবর্গ বহুবাচনিক সমাজে পূর্ব পরিকল্পিত ঐক্যবদ্ধ একক সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠার ষড়যন্ত্র করেছে। ১৯৫২ সালে নিজস্ব ভাষার অধিকার রক্ষার জন্য জীবন দান করতে হয় পূর্ব পাকিস্তানের ছাত্র জনতার। ১৯৫৮ সালে জেনারেল আইয়ুব খান সামরিক শাসন জারি করে ক্ষমতা দখল করে। ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙ্গালীর স্বায়ত্বশাসন প্রতিষ্ঠা করার লক্ষে ছয় দফা দাবি পেশ করেন। ছয় দফা ম্যান্ডেট নিয়ে পাকিস্তানে ১৯৭০ সালের ৭ ডিসেম্বর সর্বপ্রথম অনুষ্ঠিত সাধারণ নির্বাচনে পূর্ব পাকিস্তানের রাজনৈতিক দল একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে জয়লাভ করে আওয়ামী লীগ। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ মূলত স্বল্প পরিসরে মুক্তিযুদ্ধের বর্ণনা দিয়েছেন শিশুকিশোরদের জন্য। তিনি বেশি গভীরে যান নি, কারণ মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে অনেক বই আছে, সেক্ষেত্রে সেভাবে করে না লিখলেও চলবে।
War
5
সাহসী লেখকের সেরা লেখা । দেশের শত্রুদের নীলনকশা সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির চেষ্টা করা হয়েছে । দেশপ্রেমিক নাগরিকের বইটি পড়া উচিত।
Political
3
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৫ . মাসঃ আগস্ট সপ্তাহঃ তৃতীয় পর্বঃ ৫ বইয়ের নামঃ শিকল লেখকঃ জয়নাল আবেদীন প্রকাশনীঃ ভূমিপ্রকাশ পৃষ্ঠাঃ ৩২০ মূল্যঃ মুদ্রিত মূল্য ৩৬০ অনলাইন পরিবেশক: rokomari.com . ভূমিকা: আজ প্রিয় একজন লেখক এবং মানবতাবোধে উদ্বুদ্ধ একজন মানুষের লিখা বইয়ের রিভিউ লিখতে বসেছি। বইটা নিঃসন্দেহে দারুণ একটা বই। তবে আমার প্রিয় লেখক হওয়াতে আমি উনার বইয়ের প্রশংসার পাশাপাশি খুঁটিনাটি যত ত্রুটি রয়েছে বইটাতে, সেটাও তুলে ধরবো। . লেখক পরিচিতি: জয়নাল আবেদীনের জন্ম সিলেট জেলার জকিগঞ্জ উপজেলার অন্তর্গত এক গ্রামে। কঠিন বাস্তবতা আর নির্মম জীবনকে খুব কাছ থেকে দেখে বড় হয়েছেন লেখক। তাই জীবন সম্পর্কে খুব ভালো ধারণা আছে উনার। যার বহিঃপ্রকাশ তার লিখাতে ফোঁটে উঠে। জয়নাল আবেদীনের লিখা পত্রিকা কিংবা বিভিন্ন সংকলনে আগে প্রকাশ পেলেও শিকল তার প্রথম বই। বইটি প্রকাশ পেয়েছে ২০১৮ সালের অমর একুশে বইমেলায়। বইটি প্রকাশের সময় লেখক ইন্টার্ন ডাক্তার ছিলেন। . কাহিনী সংক্ষেপ: বইটিতে দুটি পরিবারের গল্প প্রাধান্য পেয়েছে। একটি পরিবার হচ্ছে মনজুর আহমেদের। তার পরিবারে রয়েছে স্ত্রী জাহানারা বেগম, পুত্র সাব্বির ও কন্যা অরণী। জাহানারা বেগম একজন আদর্শ গৃহকর্তী ও বুদ্ধিমতী মহিলা আর তার স্বামী একজন ব্যাংক কর্মকর্তা হয়েও ঠিক তার উল্টো। উনাদের ছেলে সাব্বির বেকারত্ব ঘুচাতে ছুটছে সদা। সাব্বির চরিত্রের সাথে মিশে আছে বাদল সরকার নামের এক অদ্ভুত চরিত্র। মনজুর-জাহানারা দম্পতির মেয়ের নাম অরনী। অরনীর জগৎটা নিজের পরিবার, একটি টিয়াপাখি,একটি বিড়াল আরেকটি ডায়েরির মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল। নিজের রুপ সৌন্দর্য তার শত্রু হয়ে দাঁড়ায় এক সময়। একসময় অরণী সমাজের ঘৃন্য এক নারীতে রুপান্তরিত হয়। ধর্ষিত হয়ে সে কনসিভ করে। সন্তানের মায়ার শিকলে বাঁধা পড়ে ও নির্মম বাস্তবতার শিকার হয়ে এই মেয়েটি হয়ে উঠে নন্দিনী চৌধুরী। উপন্যাসের দ্বিতীয় পরিবারটি অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার জাহিদ এবং তার স্ত্রী নীলার। এই দম্পতিটিকে আপাতদৃষ্টিতে সুখী দম্পতি মনে হলেও এদের মধ্যে কোথায় যেন একটা অজানা অসুখ কাজ করছে। এই সুন্দর আর পূর্ন সংসারেও কিসের যেন একটা শূন্যতা আর অপূর্নতা মিশে আছে। জাহিদ তার একঘেঁয়েমি জীবনের রেশ কাটাতে কিছু একটা করতে চাইলো। সে বছর দুয়েক আগের একটা মামলা নিয়ে মাথা ঘামাতে বসলো। এই মামলার ঘটনাটি উপন্যাসের অন্যতম আকর্ষণীয় একটি ব্যাপার। মামলার ভিকটিম নন্দিনী চৌধুরী। এই নারী আত্নহত্যা করেছিলো আর সুইসাইড নোটে আর সাধারণ মানুষের মত আত্নহত্যার কারণ না লিখে, লিখেছে বিখ্যাত একটি গান; "জলে ভাসা পদ্ম আমি,শুধুই পেলাম ছলনা"। লেখকের ভাষায় অপূর্ব সুন্দরী এই নারীর অদ্ভুত সুইসাইড নোটটাই কেবল অবাক করার মত ব্যাপার না। আরেকটি অবাক করার মত ব্যাপার হচ্ছে তার মরণোত্তর দেহদান। জাহিদ এই ঘটনার রহস্য উন্মোচন করতে গিয়ে উদ্ভাবন করলো জীবনের ভিন্ন এক পথ। আর এই পথে প্রবেশ করে সে নিজেই হারাতে শুরু করলো একটু একটু করে। নিজের স্ত্রী'র সাথে ঝামেলা শুরু হয় তার। তারপর কি হয়েছিলো? জানতে হলে পড়তে হবে উপন্যাস শিকল। . নামকরণ: যার মেয়ে সমাজের নির্মম বাস্তবতার শিকার হয়ে একটু একটু করে হারিয়ে যেতে থাকে, সেই মা কেবল বুঝতে পারে বুকে কতটা যন্ত্রণা পোষা থাকে। এই গল্প জাহানারা নামের এক অসহায় মায়ের। নিজের ছেলে মেয়ের জীবনের কোন সুন্দর ইতি ঘটেনি। পুরোটা জীবন নিজের সবটুকু বিলিয়ে দিয়েও সে সন্তানের মুখের হাসি কিনতে পারেন নি। মায়ের সাথে সন্তান যেরুপ শিকলে বাঁধা অথবা স্বামীর সাথে স্ত্রী যে শিকলে বাঁধা, সেই শিকলের নামেই বইয়ের নামকরণ হয়েছে। সুতরাং নামকরণের সাথে বইয়ের গল্পের সাদৃশ্য আছে। . বাঁধাই, ফ্রন্ট,পৃষ্ঠা: এই জায়গায় ঘাটতি হয়ে গেছে বইটার। লিখার ফ্রন্ট সাইজ ও কাগজ ভালো হলেও বাঁধাইটাতে ত্রুটি করেছে। . ব্যক্তিগত মতামত: বইয়ের একেবারে প্রথম দিকে আর মাঝখানটাতে কম আকর্ষণ অনুভব করেছি। কাহিনীটা ভালো ছিল কিন্তু ইতোপূর্বে লেখকের যে গল্পগুলো পড়েছি আমি, সে তুলনায় উপন্যাসে ধার কম ছিলো। অরনির বাসা ছেড়ে যাওয়ার সময়কাল একবার চার বছর আরেকবার পাঁচ বছর বলা হয়েছে। এখানে হয়তো লেখক ভুল করেছে, না হয় আমি বুঝতে ভুল করেছি। বড় এবং ছোট পরিসরে লিখা লেখকের গল্প পড়েই লেখকের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিলাম। হঠাৎ করেই প্রথম বইয়ে আশি হাজারের বেশী শব্দ না লিখে আরেকটু ছোট পরিসরে লিখলে হয়তো লেখকের গল্পগুলোর মতই বইটাও বেশী পরিমাণ দাগ কেটে ফেলতো মনে। উনার গল্পগুলোকে অতিক্রম না করতে পারলেও উপন্যাসটা পড়ে আমি তৃপ্তি পেয়েছি বেশ। এত বড় বই কিভাবে শেষ হলো টের পাইনি। বইটা পড়তে গিয়ে একটা ঘোরের মধ্যে তো পড়েছিলামই বটে। যারা পড়েন নি, তারা পড়ে ফেলুন। বুঝে যাবেন যে, একজন ডাক্তারের ভিতর কি চমৎকার লিখনীশক্তি লুকিয়ে আছে। ব্যাক্তিগত রেটিং ৪.৮/৫ . সেরা উক্তি: ১.দুনিয়া আসলে রঙ্গমঞ্চের চেয়েও বেশি ব্যবসাক্ষেত্র। ২.ঈশ্বরের বিশ্বাস মানুষের মত এত ঠুনকো না। ৩.দৃশ্যমান শিকল লাগানো হয় পায়ে। চেষ্টায় এই শিকল ভাঙা সম্ভব। অদৃশ্য শিকল লাগে মগজ আর মনে। অদৃশ্য শিকল থেকে মুক্তি পাওয়া খুব কঠিন। ৪.জগতের নিয়ম হচ্ছে যখন যে দৃশ্য দেখা উচিৎ না সেটাই সবার আগে চোখের সামনে পড়ে। ৫.যে সংসারে স্বামী বিবির ডরে বিলাই হইয়া থাকে, সেই সংসার ভুস কইরা পানিতে ডুইবা যায়। ৬.খুব প্রিয় কেউ হারিয়ে গেলে মনে হয় সে ফিরে এসে বাকি জীবন আমাকে গালি দিক, ঘৃণা করুক, তবুও ফিরে আসুক। . পাঠ প্রতিক্রিয়া: একজন ডাক্তার জয়নাল আবেদীন এবং একজন মানুষ জয়নাল আবেদীনকেও সম্ভবত একদিন ছাড়িয়ে যাবে একজন লেখক জয়নাল আবেদীন। লেখকের প্রথম বই হওয়া সত্বেও একজন পাঠকও বিরক্ত হবে বলে আমার মনে হয়না। জাহানারা, অরণী, জাহিদ হাসান চরিত্রগুলো আমার ভালো লেগেছে। সাব্বির চরিত্রটিকে মনে ধরে নি। অরণী চরিত্রটা পড়তে পড়তে আমার বার বার বাংলাদেশের আলোচিত দুজন নির্যাতিত মেয়ে তনু আর বিউটির কথা মনে পড়ছিলো। আমাদের সমাজ যে একটা অসহায় মেয়ের পাশে না দাঁড়িয়ে উল্টো তাকে আরো বেশী অসহায় করে তুলে সেটা বেশ ভালোভাবে উপলব্ধি করেছি। . লিখেছেনঃ মোঃ হৃদয় মাহমুদ রুবেল
Fiction
0
#রকমারী_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #রিভিউ ১ কথাসাহিত্যিক হরিশংকর জলদাস তাঁর ' আমি মৃণালিনী নই' উপন্যাসে ভবতারিণী থেকে মৃণালিনী হওয়া রবিঠাকুরের স্ত্রীর অন্তরঙ্গ ও হাহাকারপূর্ণ বয়ানে বিয়ের দিন থেকে নিজের মৃত্যুর আগ অবধি ঘটনার পর ঘটনার প্রায় অনুপুঙ্খ বিবরণসংবলিত আকারে তুলে ধরেছেন যেখানে আছে বাস্তব ও কল্পনার মিশেল। এ উপন্যাসের পরতে পরতে জোড়াসাঁকোর বিখ্যাত ঠাকুরবাড়ির একটা কালপর্বের ঘটনা যে রকম মাধুর্যপূর্ণ ভাষ্যে তুলে ধরেছেন তিনি, মনে হয়েছে মুখোমুখি বসে শুনছি মৃণালিনীর একান্ত আপন কথা। মৃণালিনী নিজের সাক্ষাৎ পর্যবেক্ষণের কথা যেমন জানাচ্ছেন, তেমনি বউ হয়ে আসার পর নানাজনের মুখে ঠাকুরবাড়ির বহু আগের যেসব ঘটনা শুনেছেন তারও বিবরণ দিচ্ছেন অকপটে। আলোর নিচে আঁধার থাকার মত জোড়াসাঁকোর ঠাকুরবাড়িতেও অন্ধকার ছিল। অবরোধপ্রথা ছিল। এ বাড়ির অবরুদ্ধ নারীকুলের দশা মৃণালিনীর বয়ানে লেখক যেভাবে তুলে ধরেছেন, পাশাপাশি পুরুষদের ভূমিকার কথাও তা কথাসাহিত্যের ঘরোয়া ভাষা হয়ে উঠেছে। মৃণালিনী জানাচ্ছেন, " ঠাকুরবাড়ির কড়া নিয়ম- কোনো পরপুরুষের সঙ্গে বাড়ির মেয়ের সাক্ষাৎ চলবে না।" এ উপন্যাসের এক বড় জায়গাজুড়ে আছে কাদম্বরী দেবীর সঙ্গে রবিন্দ্রনাথের সর্ম্পকের চালচিত্র, কাদম্বরী দেবীর মৃত্যু, আর আছে মৃত্যুকে ঘিরে রহস্যময়তা। আছে বাসর রাতে ভবতারিণী থেকে মৃণালিনীতে পরিণত হওয়া স্বয়ং স্বামী রবীন্দ্রনাথের কাছ থেকে তার বঞ্চনার অকপট স্বীকারোক্তি। উপন্যাসের শেষ হয়েছে মৃণালিনীর মৃত্যুর মধ্যদিয়ে। মৃত্যুর আগে তাঁর স্বীকারোক্তি, " সারাটা জীবন রবিবাবুর মনোতুষ্টিতে কাটল আমার। আমার ভালোলাগার দিকে দৃকপাত করেনি কখনো সে। এই মুহূর্তে চোখের জলে বুক ভাসিয়ে আমার চিৎকার করে বলতে ইচ্ছা করছে, আমি মৃণালিনী নই, আমি ভবতারিণী। রবিবাবুর স্ত্রী ছাড়াও আমার নিজস্ব একটা সত্তা ছিল, সেই সত্তার প্রতি রবিবাবু কোনো দিন সুবিচার করেনি।" নারী যে শুধু নারী নন, তার নিজস্ব একটা ব্যক্তিসত্তা আছে তা মৃণালিনীর বয়ানের মাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। পুরো উপন্যাসে এসব কথাই ডায়েরী আকারে লেখেন মৃণালিনী তথা ভবতারিণী। হরিশংকর বাবুর প্রসাদগুণসম্পন্ন লেখনীর গুণে সেই ডায়েরী হয়ে উঠেছে এক নারীর দলিত ব্যক্তিসত্তার দুক্ষভারাক্রান্ত দিনলিপি। #বইয়ের_নাম : আমি মৃণালিনী নই লেখক : হরিশংকর জলদাস প্রকাশক : প্রথমা প্রকাশন
Fiction
0
“কখনো কখনো প্রথম প্রেম দ্বিতীয় প্রেমের পরে আসে” একটি সচরাচর কলেবরের উপন্যাস। ছোটো ছোটো কবিতার (বলা ভালো-মুঠোফোন কাব্যের) খেলা আছে এতে। মূল গল্পের হৃদপিন্ড থেকে বের হয়ে, পটভূমির শরীরে ধমনীর মতো বিস্তার লাভ করে আবার শিরা হয়ে ফিরে এসেছে আগের জায়গায়। এভাবেই এগিয়েছে গল্প, এটাই এই উপন্যাসের চলন। অকারণ কাব্য চর্চার চেষ্টা না চালিয়ে বরং মনোযোগ দেয়া হয়েছে সাবলীল ভাষায় গল্পটি প্রকাশ করার দিকে। তাই বলে, এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলে পাড়ার মোড়ে চা খেতে যাবেন, সেটা কিন্তু হবে না। যে কোনো ভালো সাহিত্যের মতোই এই গল্পটি আপনার একান্তের কিছু সময় আদায় করে নেবে। চোখের জলে না কি ঠোঁটের হাসিতে? তার উত্তর বরং বইটি আপনার সাক্ষাতেই দেবে। লেখক এখানে তার গল্পগুলোকে আপন রচনাশৈলীতে ফুটিয়ে তুলেছেন, যা সবার জীবনের সাথেই মিলানো যায়। শৈশব, কৈশোর, প্রণয় থেকে শুরু করে বর্তমান সময়ের আলোচিত সমালোচিত অনেক ঘটনা যা সম্পৃক্ত হয়েছে লেখকের জীবনে এমন কোন কিছুই বাদ পড়েনি এ বইতে। এ বইয়ের গল্পগুলো যেমন বিভিন্ন রসের, ঠিক তেমনিভাবে এ গল্পগুলো সহজেই আলোকপাত করে আবহমান কাল ধরে চলতে থাকা আমাদের সমাজ ব্যবস্থারও। প্রতিটি গল্পের হাস্য, রস, কৌতুক আর বিচ্ছেদ-বেদনার আড়ালে লুকিয়ে আছে আমাদের বাস্তব জীবনের প্রতিচ্ছবি। লেখক তার নিজের জীবন চিত্রের পটে খুব সাবলীল ভাবেই ফুটিয়ে তুলেছেন সমাজ জিবনের বাস্তব চিত্র। আবার ভুলে যাননি আমাদের অহংবোধের অন্যতম উৎস আমাদের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের ব্যাখ্যা করতেও। ইতিহাস, ঐতিহ্য আর গৌরবের কথামালাও বর্ণিত হয়েছে অনেক গল্পের পরতে পরতে।
Fiction
0
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_ডিসেম্বর বইয়ের নাম: জল জোছনা। লেখক: হুমায়ূন আহমেদ। ধরণ: সমকালীন উপন্যাস। ব্যক্তিগত রেটিং: ৬.৮/১০ প্রকাশন: পার্ল পাবলিকেশন্স। প্রচ্ছদ: ধ্রুব এষ। প্রথম প্রকাশ: জুন, ১৯৯৩। অনলাইন পরিবেশক: www.rokomari.com পৃষ্ঠা সংখ্যা: ৭৮ মুদ্রিত মূল্য: ১২৫/- ISBN : 984 495 007 4 #লেখকের কথা: ঈদ সংখ্যায় এই লেখাটি প্রথম প্রকাশিত হয়। গ্রন্থবদ্ধ করার আগে বেশকিছু রদবদল করা হয়েছে। আমার ইচ্ছা ছিল প্রখর সূর্যালোকে জোছনার গল্প বলব। চেষ্টা করেছি প্রাণপণ। কতটা পারলাম বুঝতে পারছি না। #কাহিনী সংক্ষেপ: A bag of flower Spider full of can Truth is meaningless To a Gypsy man. তিনি ঘুমের মধ্যে শুনলেন শোঁ শোঁ শব্দ হচ্ছে। ঘুমের মধ্যেও চেতনার খানিকটা অংশ কাজ করে। সেই অংশ তাঁকে বলল, তুমি স্বপ্ন দেখছ। ভয় পাবার কিছু নেই। আরেকটি অংশ বল, না, স্বপ্ন না। ঝড় হচ্ছে। তুমি জেগে ওঠ। জানালা বন্ধ কর। সাইড টেবিলের ড্রয়ারে টর্চলাইট আছে কি-না দেখ। তিনি জাগলেন না। ঘুমের মধ্যেই পাশ ফিরলেন। শোঁ শোঁ শব্দ হতেই থাকল। এক সময় এই শব্দের সঙ্গে খিলখিল হাসির শব্দ যুক্ত হলো। ঝড় এবং হাসি একসঙ্গে যায় না। কিছু একটা হচ্ছে যা তিনি বা তাঁর মস্তিষ্কের ঘুমন্ত অংশ ধরতে পারছে না। তার অস্বস্তি বাড়ল। তিনি জেগে উঠলেন। ঝড়-টড় কিছু না। বাথরুমে তাঁর স্ত্রী রেবেকা হেয়ার ড্রায়ার দিয়ে চুল শুকোচ্ছেন। শোঁ শোঁ শব্দ আসছে হেয়ার ড্রায়ার থেকে। রেবেকার পাশে তাঁর বড় মেয়ে নীতু। সম্ভবত সে-ই হাসছে। তিনি বালিশের নিচ থেকে হাতঘড়ি বের করলেন। রাত সাড়ে তিনটা। এই সময়ে কেউ হেয়ার ড্রায়ারে চুল শুকায়? কি হচ্ছে? না-কি তিনি এখনো স্বপ্নের মধ্যেও আছেন? #পাঠ প্রতিক্রিয়া: জল ও জোছনা, হুমায়ূন আহমেদের এক অন্য ধারার লেখা। পড়তে গিয়ে এক বারের জন্যও খাপছাড়া লাগেনি। পড়েছি, পড়েছি আর মুগ্ধ হয়েছি। একটি ভ্রমণ, যেখানে গিয়ে সারারাত জোছনা দেখার প্ল্যান... নাহ্, আর বেশি কিছু বলব না। এক কথায় অসাধারণ একটি উপন্যাস। #সেরা উক্তি: * মানুষের স্বপ্ন মাঝে মাঝে খুব জটিল এবং খাপছাড়া হয়ে থাকে। * পঞ্চাশ পার হওয়া মানুষদের ঘুম একবার ভেঙে গেলে আর আসে না। * কোথাও বেড়াতে যাবার আগে মেয়েরা দীর্ঘ সময় বাথরুমে থাকতে পছন্দ করে। * এই দেশে কালো মেয়েদের কেউ রুপবতী বলে না। * অন্ধকারে ঘর ত্যাগ করতে নেই। * শরীরের সৌন্দর্য যেভাবে দেখা যায় মনের সৌন্দর্য সেভাবে দেখা গেলে খুব ভালো হতো। * এই পৃথিবীতে সবেচেয়ে সুখী বোধহয় ছেলেরা। * মানুষ দলবদ্ধ হলেই আপনা-আপনি দলের একজন নেতা হয়ে যায়। * গ্রামের মেয়েরা অল্প দিনেই বুড়িয়ে যায়। * এই দেশে গোপন কথা সবাই জানে-প্রকাশ্য কথা কেউ জানে না। * বেড়াতে বের হবার সময় বয়স ঘরে ফেলে রেখে বের হতে হয়। * বোকা মেয়েরা ঝামেলা করে না, ঝামেলা করে বুদ্ধিমতীরা। * পছন্দ এবং ভালোবাসা এক জিনিস না। * এই দেশে যিনি যত বেশি মানুষের অসুবিধে করবেন তিনি তত বড় নেতা। * যখন কিছুই দেখার নেই তখন সামান্য জিনিসও দেখতে ভালো লাগে। * তুই-এর নীচেও আরেকটা বাক্য ধারা থাকলে মন্দ হতো না। * মানুষ কত দ্রুত বড় হয়। * একত্র হওয়া একদল মানুষের মতো ভয়ংকর আর কিছুই নেই। * বিপদ একা আসে না, নানা দিক থেকে একসঙ্গে আসে। * বয়স বেড়ে গেলে খিদে সহ্য করার ক্ষমতা কমে যায়। * দুঃসময়ে আপনা-আপনি অনেক সমস্যার সমাধান হয়ে যায়। * বিপদের সময় কিছুই কাজ করে না। * পেশাদারীরা ভুল করে না। * বিপদের সময় ছেলেদের শক্ত হতে হয়। * মানুষ ক্ষেপে গেলে কি করে সে নিজেও জানে না। * পৃথিবীতে খুব অল্প সংখ্যক মানুষ জন্মায় যাদের কাছাকাছি গেলে মনে পবিত্র ভাব হয়। * ঝামেলা থেকে দূরে থাকা ঝামেলা এড়ানোর কোনো পথ না। #যা ভালো লাগেনি: প্রসিদ্ধ অনেক লেখক আছেন যারা লেখা নিয়ে বরাবরের মতোই খামখেয়ালি থাকেন। কিন্তু এই জায়গায় এসেই হুমায়ূন আহমেদ অন্য সবার চেয়ে আলাদা। তিনি সবসময় সর্বাত্মক চেষ্টা করেন নির্ভুল একটি লেখা উপস্থাপন করার জন্য। এই পর্যন্ত আমি হুমায়ূন আহমেদের যত লেখা পড়েছি এই উপন্যাসটি আমাকে মর্মাহত করেছে। হয়ত হুমায়ূনের প্রতি উচ্চাকাঙ্ক্ষার জন্যই এমনটা মনে হয়েছে। এই বইয়ে যথেষ্ট বানান ভুল আছে যা দৃষ্টিকটু লেগেছে। আপনার পাঠ শুভ হোক :) written by: Tasaddek Bhuiyan(সোহাগ)।
Fiction
0
যুদ্ধপরবর্তী বাংলাদেশের অস্থির সময়ে সংঘটিত সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে রয়েছে অনেক অস্পষ্টতা।ঢাকার তৎকালীন স্টেশন কমান্ডার এম এ হামিদ সেনা অভ্যুত্থানগুলো সম্পর্কে বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর খুঁজেছেন এই বইতে,জন্ম দিয়েছেন কিছু নতুন প্রশ্নের। প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য থেকে সম্ভাব্য উত্তরও বের করার চেষ্টা করেছেন।অভ্যুত্থানগুলোর সাথে জড়িত অনেকের সাথে তার পরিচয়,এমনকি ঘনিষ্ঠতা ছিল।তাই রুদ্ধশ্বাস ঘটনাগুলোর বর্ণনা পাওয়া গেল প্রত্যক্ষদর্শীর জবানীতে।অভ্যুত্থানপরবর্তী ক্যান্টনমেন্টের থমথমে অবস্থা,সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া আর রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার বর্ণনা করেছেন লেখক তার নিজস্ব ভঙ্গিতে।লেখকের দৃষ্টিতে অভ্যুত্থানগুলোর সাফল্য ও ব্যর্থতার কারণগুলো গুছিয়ে লিখেছেন এই বইতে।পর্যালোচনা করতে গিয়ে যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন নিরপেক্ষ থাকার।সেনা অভ্যুত্থান নিয়ে লেখা বইগুলোর মধ্যে অন্যতম এই বইটি আরো জানার আগ্রহ তৈরী করবে বলে মনে করি।
Political
3
লারসন এর মিলেনিয়াম সিরিজ এর প্রথম বই হিসাবে অসাধারন। শুরুতে গতি একটু স্লথ হলেও গল্প যত এগোতে থাকবে পাঠক এর আগ্রহ তত বাড়তে থাকবে। ছন্নছাড়া জীবনের মেয়ে লিসবেথ এর প্রতি কখন ও জন্মাবে সহানুভূতি আবার কখন ও বিরক্তি। প্রতিটি পাতায় প্রশ্ন জাগবে এর পর কি হবে। সাংবাদিক হিসাবে ব্লমকভিস্তকে মনে হবে যথাযথ যদি ও সে বহুগামী। রহস্য উন্মচনে সাংবাদিক ব্লমকভিস্ত অসাধারন মেধার পরিচয় দেয় এবং সে সফল। এই রহস্য উন্মচনে লিসবেথ তার যোগ্য সহযোগী রুপে আবির্ভূত হয় এবং সে ও তার আসাধারন মেধার দ্বারা ব্লমকভিস্ত কে পূর্ণ সহযোগীতা করে। কাহিনীর একটা পর্যায়ে গিয়ে মনে হবে ব্লমকবিস্ত যে তরুণী কে খুজছে তাকে পাওয়া বা এই রহস্য উন্মচন করা অসম্ভব। আর এখানে ই লেখক সফল। পাঠককে কাহিনীর শেষ পর্যন্ত ধরে রাখবে লেখক এর লেখার মুনশিয়ানা। গুল্পের শেষ পরিনতিতে পাঠক আভিভুত হবে...............।
Thriller
1
বাড়ির নাম নিরিবিলি। বাড়ির কর্তা সোবাহান সাহেব দুবছর হলো উকালতি থেকে রিটায়ার্ড করেছেন। তার দুই মেয়ে। বড় মেয়ে বিলু বরিশাল মেডিকেল কলেজে পড়ে। ছোট মেয়ে মিলি ইকনমিক্সে অনার্স করছে।সোবাহান সাহেবের স্ত্রি মিনু সাধারন গৃহবধূ। এবাড়িতে দুজন কাজের লোক রহিমার মা ও কাদের ছাড়াও আরেকজন থাকেন। তিনি মিলির মামা। তার কোনও কাজকর্ম নাই। সারাদিন শুয়ে বসে সিনেমা দেখে জীবন কাটানোই তার ইচ্ছা। তার আরেকটা ইচ্ছা হলো সিনেমা বানানো। আনিসের মা মরা দুই ছেলে-মেয়ে টগর ও নিশা। এদের যন্ত্রনায় আনিস অতিষ্ট। ফায়ার সার্ভিস ফায়ার সার্ভিস খেলার নাম করে এরা ঘরের বিছানা এবং জানালার পর্দায় আগুন লাগিয়ে দেয়, পরে আগুন নেভাবে বলে। দর্জি দর্জি খেলার নাম করে এরা বিছানা কাঁথা বালিশ কাচি দিয়ে কেটে ফেলে। আনিসের বাড়িওয়ালা আনিস কে বাড়ি ছাড়ার নোটিশ দিয়েছেন। আনিস ঘটনাক্রমে সোবাহান সাহেবের ছাদের দুইটা রুম ভাড়া নেয়। মনসুর ডাক্তারি পাশ করে গ্রিন ফার্মেসি নামে একটা ফার্মেসিতে বসে। ফার্মেসির উপরতলায় ফার্মেসির মালিক তার থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছেন। সোবাহান সাহেবের ছোট মেয়ে মিলি একদিন ঘটনাক্রমে তার ফার্মেসিতে আসে। সেই ঘটনাকে কেন্দ্র করে মনসুরও নিরিবিলিতে যাতায়াত শুরু করে। হঠাৎ একদিন সোবাহান সাহেবের গ্রামের বাড়ি থেকে খোন্দকার এমদাদ সাহেব তার নাতনী পুতুল কে নিয়ে এই বাড়িতে উপস্থিৎ হয়। এমদাদ সাহেব খুবই ধড়িবাজ লোক। তার ইচ্ছা তার নাতনিকে মনসুর ডাক্তারের কাছে গছানোর। "নিরিবিলি" নামক এই বাড়িকে কেন্দ্র করে ঘটতে থাকে নানানরকম মজার মজার ঘটনা। ব্যক্তিগত মতামতঃ আমি কিভাবে এই বইটা এতোদিন মিস করে গেছি সেটা চিন্তা করলেই খারাপ লাগছে। অসাধারন একটা বই। হুমায়ূন আহমেদের অনেক বই পড়লে মন খারাপ হয়ে যায়। কিন্তু এই বইয়ের প্রতিটা লাইন মজার। ভালো লাগার। মন খারাপের কোনও বিষয় এখানে নেই। মিলি, বিলু দুই বোনেরই অসাধারন বুদ্ধিমত্তা। দুবোনকেই ভালো লেগেছে। আনিসের জন্য প্রথমে মন খারাপ ছিল, সেটাও পরেরদিকে ভালো লাগাতে বদলে যায়। টগর ও নিশার দুষ্টুমিগুলাও ভালো লেগেছে। বইপোকাদের কথা দিচ্ছি ঠকবেন না বইটি পড়লে।
Fiction
0
“যার পকেটে শৈশবে নেই সে যেন কোনওদিন প্রতিভার নদীতে না নামে। নামলেই ডুবে যাবে। নয়তো ভেসে যাবে। যার আছে-সেই শুধু সাঁতরাতে পারবে। জীবনেও তাই হয়। ভালো ছোটোবেলা আসলে বড়োবেলার অযাডভানস টিকিট। আগে লাইন দিয়ে কেটে রাখতে হয়। এ টিকিট হাতে থাকলে বড়োবেলাটাও সুন্দর। চারমূর্তি কে নিয়ে রচিত হয়েছে ৫টি উপন্যাস, ৩২ টি গল্প এবং ১টি নাটিকা যা এ সংকলনে স্থান পেয়েছে। বলাই বাহুল্য এ বইটি নির্মল আনন্দের একটি আধার। রচনাগুলো সবগুলোই রোমাঞ্চ এবং হাস্যরসে ভরপুর। যে কোন কাজ বা অকাজ সফলভাবে করার পর টেনিদার সোল্লাসে সেই চিৎকার, “ডি-লা গ্র্যান্ডি মেফিস্টোফিলিস” আর বাকি তিনজনের গলা মেলানো “ইয়াক-ইয়াক” যারা না পড়বে তারা শুধু যে কেবল নির্মল হাস্যরস থেকেই বঞ্চিত হবে তা নয়, বঞ্চিত হবে বাংলা কিশোর সাহিত্যের এক মাস্টারপিস থেকেও। হাস্যরস উপভোগের কূল ছাড়ানো মাত্রার এই বইটি তাই সকলেরই বিশেষ করে কিশোর-কিশোরীদের পড়া উচিত। সারাদিন কেবল মোবাইলের স্ক্রিনে না তাকিয়ে, ফেইসবুকে চ্যাট না করে বা টিভিতে আবজাব না দেখে এই বইটি পড়ে ফেললে সেটি কিশোর-কিশোরীদের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্যেও অনেক উপকার হবে। বই পড়ার চেয়ে ভাল কাজ দ্বিতীয় আর কী হতে পারে ? কিছুই না। তাই বলি, জীবনটা আফসোস করার জন্যে বড্ড বেশি ছোট। তাই পড়ে ফেলা যাক মানিক সমগ্র। ই লেখাগুলোর সঙ্গে একে তো অসংখ্য পাঠকের নস্ট্যালজিয়া জড়িয়ে আছে। তায় যে সময়ে ও পরিপ্রেক্ষিতে এগুলো লেখা হয়েছিল তা আজকে অকল্পনীয়। সর্বোপরি যে পাঠকরা ছিল এই লেখাগুলোর টার্গেট অডিয়েন্স, তাদের আজ কোথাও পাওয়া যাবে না,
Childrens-Book
2
রিভিউঃ রোজমারিকে বিয়ে করার পর মনোজ সেন জার্মানি থেকে কলকাতা চলে আসে। এখানে এসে নিজেদের ইন্ডাস্ট্রি চালু করে।ওদের কারখানায় একটা ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যালয় তৈরি হয়,যেটা বিভিন্ন দেশের বিভিন্ন ইন্ডাস্ট্রি তে কাজে লাগে। মনোজ অতটা করিৎকর্মা নয়, টেকনিক্যাল ব্যাপার স্যাপার ওর স্ত্রী রোজমারিই হ্যান্ডেল করে। বিদেশ থেকে বেশকয়েকজন ডেলিগেটর এসেছে। মনোজের বিশ্বাস এবারের মিটিং এ ওদের তৈরি অ্যালয়ের চাহিদা বেড়ে যাবে। ডেলিগেটর রা একটা হোটেলে আছে। ওদের সাথে মনোজের পি.আর.ও সুব্রত রয়েছে। খবর পাওয়া গেছে ১৫ মিনিটের মধ্যেই ওরা রওনা দেবে। এমন সময় ওদের অফিসে একজন লোক আসল, ঝাড়া ছয় ফিট লম্বা, অ্যাথলেটদের মত পেটা শরির। সুধাকর দত্ত, ইন্টারপোল অফিসার।এই সময়ে একজন ইন্টারপোল অফিসার কেন আসবে ভেবে পাচ্ছেনা মনোজ। সুধাকর দত্ত বলল যে ওদের অফিসে যে কজন ডেলিগেটর আসছে তার মধ্যে একজন ইন্টারন্যাশনাল ক্রিমিনাল রয়েছে। এবং সে নিজের নাম বদলিয়ে আছে। সুধাকর দত্ত চাচ্ছেন মনোজের পার্সোনাল সেক্রেটারি হিসেবে থাকতে, তাহলে সে হয়তো ঐ ক্রিমিনাল কে আইডেন্টিফাই করতে পারবে। এসময় হঠাৎ সুব্রত ফোন করে জানায় যে ডেলিগেটরদের একজন হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পরায় তারা এখন আর আসছেন না। মনোজ চিন্তিত। কিন্তু সুধাকর দত্তের কথায় বোঝা গেল, এরকটাই হওয়ার কথা। পরে খবর এল যে অসুস্থ হয়ে পরেছিল তার নাম আঁদ্রে। আদ্রে মূলত সাক্কি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর একজন সাইন্টিস্ট। তারা একটা সলিড ফুয়েল তৈরি করার চেষ্টা করছিল, যেটা তৈরি করতে পারলে সাড়া পরে যেত পৃথিবীতে। এদিকে প্যারিসে মধ্যরাতে টেলিফোন বাজল গোপীনাথ বসুর ঘরে। গোপীনাথ বসু সাক্কি ট্রেড ইন্টারন্যাশনাল এর আরেকজন সাইন্টিস্ট। সেই আঁদ্রে কে নিয়ে এসেছিল সাক্কিতে। ফোন করেছে কুখ্যাত টেরোরিস্ট অর্গানাইজেশন ভিকিজ মবের একজন এজেন্ট। সে জানাল যে আঁদ্রে কে কলকাতায় খুন করা হয়েছে। ওদের কথামত না চললে তাকেও খুন করা হবে। ওদের দাবী ওরা যে প্রজেক্ট টা নিয়ে কাজ করছিল সেটার ব্লুপ্রিন্ট ওদের চাই। গোপীনাথ ভিকিজ মব সম্পর্কে কিছুই জানতো না। কয়েক জায়গায় টেলিফোন করে ওদের সম্পর্কে জানতে পারে। ভিকিজ মবের প্যারিস শাখার দায়ীত্বে আছে এস দাতা। গোপীনাথ যে ওদের ব্যাপারে খোঁজখবর নিয়েছে সেটাও ওরা জানে। গোপীনাথরা যে প্রজেক্টটা নিয়ে কাজ করছিল তা যদি ওদের হাতে যায় তাহলে বিপদ। এদিকে আঁদ্রের মৃত্যুর পর আঁদ্রের ফ্ল্যাট থেকে দরকারি কাগজপত্র সরিয়ে ফেলে গোপিনাথ। এবং এটা করতে গিয়ে বরং সাক্কি তার উপর ক্ষেপে গিয়ে তাকে নজরবন্দি করে রেখেছে।একজন বাঙালি ভদ্রলোকের সাহায্যে ওদের নজরবন্দি থেকে পালিয়ে যান গোপীনাথ। তাকে পালাতে সাহায্য করে সুধাময় দত্ত। সাক্কির ভাড়াটে খুনিরা এখন উঠেপড়ে লেগেছে গোপীনাথকে খুন করতে। কলকাতায় যে ইন্টারপোল অফিসার গিয়েছে, সুধাকর দত্ত সেই মূলত এস দাতা। প্যারিসে দত্তকে ওরা দাতা বলে। এই দাতা লোকটার চাল চলন কেমন যেন রহস্যময়। কখনও মনে হয় সেই ভিলেন আবার কখনও মনে হয় সেই হিরো। গোপীনাথ বসু কি পারবে ভিকিজ মব থেকে রেহাই পেতে? সাক্কির ভাড়াটে খুনিদের হাত থেকে বাচতে? যদি তাকে ধাওয়া করে এস দাতা? আবার যদি তাকে সাহায্য করে সুধাকর দত্ত? ব্যক্তিগত মতামতঃ শ্বাসরুদ্ধকর। এক বসায় একটানা পাঁচঘন্টা লাগিয়ে পড়েছি। এর আগে কোনও বই এভাবে একটানা পড়িনি। যারা বইটি পড়েছেন তাদের সাথে একটা কথা শেয়ার করি। যদি বইটির কাহিনী দিয়ে সিনেমা তৈরি হয় তাহলে সুধাকর দত্ত বা এস দাতার চরিত্রে আপনি কাকে ভাববেন? আমি চোখ বন্ধ করে শাশ্বত চট্টোপাধ্যায় কে ভেবে রেখেছি।
Thriller
1
বিগত ২০ মিনিট যাবত মোটামুটি তব্দা হয়ে আছি। খুব বিশ্লেষণমূলক সমালোচনা করা আমার পক্ষে সম্ভব না। রবি দা, একেবারে মন থেকে যদি বলি আমি কখনও কল্পনাও করতে পারি নাই এত সহজভাবে এমন কঠিন আর বাস্তব চিত্র আপনি উপন্যাসে তুলে ধরবেন। উপন্যাসটার একেবারে শেষ অংশটুকু মনে হয় খুব বেশি ছুঁয়ে গেছে। একেবারে শেষের কয়েকটা লাইনআমার ব্যক্তিগত ভাবে খুব বেশি মনে ধরেছে। "এই অনিশ্চিত শহরে কেউ সহজে আসতে চায় না। গর্ভের শিশুটি এত খবর জানে না। সে ব্যাগ্র হয়ে আছে পৃথিবীর আলো গায়ে মাখার অপেক্ষায়।" ব্যক্তিগত ভাবে আমি রবি ভাইকে যতটুক চিনি উনার লেখালেখির মূল আকর্ষণ মোটামুটি হাসি ঠাট্টা করা যায় এ সমস্ত বিষয়। তাই কেন যেন রাজনৈতিক একটা ইস্যু হলেও উপন্যাসটার প্রতিটা প্লটে ব্যক্তিগত অনুভূতির ব্যাপারগুল এত বেশি মাত্রায় ছিল যে একবারের জন্য ও মনে হয়নি খুব গুরু গম্ভীর কোন বিষয় নিয়ে আলোচনা হচ্ছে। উপন্যাসটা টা একই সাথে অসম্ভব কষ্টের, কিন্তু একই সাথে খুব হালকা ভাবে আমাদের চারপাশের একেবারে সূক্ষ্ম থেকে সূক্ষ্মতর ত্রুটি বা সিস্টেম যা ই বলেন না কেন সব ই ধরা পড়েছে। দিনশেষে কাঠখোট্টা শব্দের লেখা পড়তে কারও ভালো লাগেনা, বিশেষ করে বর্তমান সময়ে। এত সহজ সুন্দর কিন্তু বাস্তবিক রূপে তুলে ধরে একটা গল্প বলার জন্য লেখককে মন থেকে ধন্যবাদ। আর Ashif Entaz Rabi ভাই আপনার লেখার নিজস্ব ভঙ্গিটা এই উপন্যাসে মনে হয় আরও বেশি পাকাপোক্ত হয়েছে। আমার ধারণা আজ অবধি যত লেখা লিখেছেন তার মাঝে আপনার "চন্দ্রমুখী " টাই মুখর হয়ে আছে। আমি আবার ও বলি আমি চিন্তাও করি নাই আমার এত ভালো লাগবে। আর সবচেয়ে বড় কথা আপনার নিজস্ব লেখার ভঙ্গিটা একান্তই স্রষ্টা প্রদত্ত আপনার আশীর্বাদ। আশা করি যে দেশে , যে অবস্থায় ই থাকেন না কেন ঠিক আপনার মত করে গল্পগুলো লিখে যাবেন ,
Fiction
0
এমনিতেই কিশোর উপন্যাস রচনায় মুহম্মদ জাফর ইকবাল সিদ্ধহস্ত আর বিষয়বস্তু যদি হয় মুক্তিযুদ্ধ তাহলে সেটা ঝলসে উঠে আপন মহিমায়। কাহিনীর শুরু স্বাধীনতা পূর্বক বাংলাদেশের কাঁকনডুবি গ্রামে।নানির কাছে বেড়ে ওঠা কিশোর রঞ্জুর জবানিতে এর গল্প । আর আছে বন্ধু মামুন,লতিফা বুবু, চা’র দোকানি বলাই কাকা,গ্রাম্য পাগল হাবিবুর রহমান, গ্রামের সবচেয়ে ফালতু মানুষ মতি। কাঁকনডুবির নিস্তরঙ্গ জীবনে প্রথম ঢেউ তোলে রঞ্জুদের স্কুলের বদলি শিক্ষক মাসুদ স্যার। রঞ্জুদের কিশোর মনে স্বাধীনতার বীজও বপন করেন তিনি। স্কুলে প্রথম বারের মত পালিত হয় একুশে ফেব্রুয়ারী, বাঁশ দিয়ে তৈরি শহীদ মিনারে। মাসুদ স্যার এর কথোপকথনে উঠে এসেছে বাংলাদেশের স্বাধিকার আন্দোলনের প্রেক্ষাপট। আর বলাই কাকার চা’র দোকানের রেডিও টা বর্ণনা করে গেছে ৭১ এর দিনলিপি। ৭ই মার্চ, ২৫শে মার্চ এর কালরাত্রি, বঙ্গবন্ধুর গ্রেপ্তার, জিয়াউর রহমানের স্বাধীনতার ঘোষণা সব খবরই আসে কাঁকনডুবি গ্রামে আর আসে বানের পানির মত শহর ছেড়ে পালিয়ে আসা মানুষ। আসে ডোরা নামের কিশোরী যার ইঞ্জিনিয়ার বাবাকে পাকিস্তানি বাহিনি মেরে ফেলে রেখে দিয়েছিল, লাশ দাফন করতে দেয় নি। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হলে কাঁকনডুবি গ্রাম বদলে যায়। বদলে যায় এর মানুষেরাও। মাসুদ ভাই যোগ দেন মুক্তি বাহিনিতে ,ফালতু মতি হয় মইত্যা রাজাকার, গঠন করে রাজাকার বাহিনি, রঞ্জুদের স্কুল টা পরিনত হয় পাকিস্তানি বাহিনির টর্চার কাম্পে। এক সকালে মুক্তিবাহিনির সাথে যোগাযোগ আছে এই সন্দেহে রঞ্জুকে বাড়ি থেকে তুলে নিয়ে যায় পাকিস্তানি মিলিটারি। চলে অকথ্য নির্যাতন। রঞ্জুর জীবন সংশয় বুঝতে পেরে তাকে উদ্ধার করে মুক্তিবাহিনির ক্যাম্পে নিয়ে আসে মাসুদ ভাই সাথে খোকনের ছদ্মবেশে ডোরা। শুরু হয় তাদের গেরিলা জীবন। ঘটনাক্রমে রঞ্জু ও ডোরার অসম সাহসিকতায় পাকিস্তানি মিলিটারির কবল থেকে উদ্ধার হয় রঞ্জুদের স্কুল। উড়ান হয় স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর কাঁকনডুবি যেন বাংলার ৬৪ হাজার গ্রামের প্রতিচ্ছবি। রঞ্জু, ডোরারা মনে করিয়ে দেয় মহান স্বাধীনতার যুদ্ধে অংশ নেয়া কিশোর কিশোরীদের অবদান যারা অনেকেই স্বাধীনতার সূর্য দেখে যেতে পারেনি। আছে পাইকার ভাই নামের মজার ও মহান মুক্তিযোদ্ধার আত্মত্যাগের কথা। আছে মা নামে এক কিশোরী বধু যাকে পাকিস্তানিরা ধরে নিয়ে ছিল বলে তাঁর পরিবার ঘরে তোলেনি। আছে স্বাধীনতা পূর্বক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, পাকিস্তানি মিলিটারির অত্যাচার, মা-বোনদের ক্যাম্পে ধরে নিয়ে আটকে রাখার কথা সবই এসেছে কিশোর উপযোগী ভাষায়। ২৫৬ পৃষ্ঠার এই বইতে সমগ্র মুক্তিযুদ্ধ কে লেখক ফুটিয়ে তুলেছেন কাঁকনডুবি গ্রামের ক্ষুদ্র ক্যানভাসে। সুখপাঠ্য এবং এক নিঃশ্বাসে শেষ করার মতো একটি বই যা বাংলাদেশের প্রতিটি কিশোর কিশোরীদের অবশ্য পাঠ্য হওয়া উচিত।
Childrens-Book
2
সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যের স্রষ্টা লিও টলস্টয়ের করেকটি কিশোর গল্প নিয়ে রচিত হয়েছে ‘টলস্টয়ের কিশোর গল্প' বইটি। টলস্টয়ের এই কিশোর গল্প গুলো অনুবাদ করেছেন এনায়েত রসুল। এনায়েত রসুল স্বনামখ্যাত শিশুসাহিত্যিক মোহাম্মদ নাসির আলী ও বেগম মেহের উন নিসা’র দ্বিতীয় পুত্র। ১৯৫৩ সালের ১২ জুন বিক্রমপুরের ধাইদা গ্রামে জন্ম গ্রহণ করেন। লেখাপড়া ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ওপর। ছড়া লেখার মাধ্যমে লেখালেখির জগতে বিচরণ শুরু করেন। সব বয়সী পাঠকদের জন্যে লেখেন তিনি। তবে মূলত শিশুসাহিত্যিক তিনি। শিশুসাহিত্য সৃষ্টিতে তাঁর দায়বদ্ধতা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। সেই দায়বদ্ধতা থেকে রচনা করে চলেছেন ছোটদের গল্প এবং অনুবাদ করছেন বিশ্বের সব বিখ্যাত লেখকদের বিখ্যাত সব গল্প। এরই ধারাবাহিকতায় তিনি অনুবাদ করেছেন লিও টলস্টয়ের কিশোর গল্প। সাহিত্যিক লিও টলস্টয়কে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নাই। পাঠকরা কম বেশি সবাই জানেন চেনেন এই লেখককে। লিও টলস্টয় যেমন জানেন অনেক ভাষা তেমনই তিনি সঙ্গীত শাস্ত্র এবং চিত্রাঙ্কন বিদ্যাতেও ছিলেন পারদর্শী। তিনি একজন জমিদার হয়েও সাধারণ মানুষের কথা ভেবেছেন,সাধারণ মানুষের জন্য কাজ করেছেন। তাঁর মনের গড়ন ছিলো ভাবুকের, দার্শনিকের। সে জন্যই তিনি যখন গল্প উপন্যাস নাটক লেখা শুরু করেন সেখানে কোথাও অবাস্তব রোমান্টিক কল্পনা দেখা যায় না। তিনি যা নিজের চোখে দেখেছেন তাই তিনি তাঁর লেখায় তুলে ধরেছেন। তাঁর প্রতিটি লেখায় মানবতা ফুটে উঠেছে। আর সেই সব লেখা ছোটদের হৃদয় স্পর্শ করে যায়। তাঁর লেখা গল্প গুলি শিশু কিশোরদের প্রকৃত মানুষ তৈরিতে সহায়তা করে। ঈশ্বর সত্যদ্রষ্টা, মানুষ কি নিয়ে বাঁচে, দুই বৃদ্ধ, জীবে প্রেম করে যেই জন, ক্ষুদে শয়তান ও পাউরুটির খোসা এই পাঁচটি গল্প নিয়ে সংকলন করা হয়েছে উক্ত বইটি।
Childrens-Book
2
অনুবাদ: আনু মুহাম্মদ মূল: ‘Letter To A Child Never Born’ by ‘Oriana Fallaci’ এই গল্প টি একজন অবিবাহিত মায়ের গল্প এবং তার গর্ভে দিন দিন বেড়ে ওঠা অনাগত এক সন্তানের গল্প। ঠিক যখন থেকে কোন একটা মেয়ের শরীরে নতুন আরেকটি প্রাণের উদ্ভব হয় তখন থেকেই একটা সাধারন মেয়ে একজন মা হয়ে যায়! কিন্তু একজন অবিবাহিত মেয়ে যখন তার পেটে ধারন করে আকস্মিক ঘটে যাওয়া এক অসময়ের বীজ, যার দায় ভার কখনোই সেই পুরুষটি নিতে চায় না, কিন্তু মেয়েটি চায় তার সন্তান কে এই বিচিত্র পৃথিবী দেখাতে; তখন সেই মেয়েটিকে আশেপাশের সবাই কোন চোখে দেখে, পেটের মধ্যে বেড়ে ওঠা সন্তানের প্রতি সকলের কি মনোভাব হয়; কিভাবে তার অনাগত সন্তানের সমগ্র ভার তার কাঁধে এসে পরে, কিভাবে মা ও সন্তান একে অন্যের উপর নির্ভরশীল হয়ে বেঁচে থাকে, সেই গল্পের নাম ই— হাত বাড়িয়ে দাও। মেয়েটি নিজের মধ্যে বেড়ে ওঠা সন্তানের সাথে প্রতিটি মুহূর্ত কথা বলে। নিজের সন্তান কে প্রতি মুহূর্তে বোঝাতে থাকে এই পৃথিবী টা কত কঠিন! মাতৃগর্ভ থকে মুক্ত হলেই প্রকৃত জীবনের শুরু। আর সে জানে— জীবন একটা যুদ্ধ, যেখানে প্রতি বিন্দু আনন্দের জন্য জীবন কে কঠোর মূল্য দিতে হয়! তাই তার ভয় হয়, এমন একটা পৃথিবীতে তার সন্তানের জন্ম দেওয়া কতটা সঠিক সিদ্ধান্ত! যেখানে স্বাধীনতা কেবল একটা নাম, কারন জন্মের পর থেকে নিজের অনিচ্ছায় করতে হয় অনেক কিছু, পূরণ করতে হয় প্রভুদের ভুল চাওয়া; যেখানে ভালবাসা হল এক ধরনের তামাশা আর প্রতারণা, যা মানুষকে সবসময় বিভ্রান্ত করে; যেখানে মানুষের আগামী কখনোই আসে না; যেখানে মেয়েদের জন্ম দেওয়াকে অনেক বাবা মা অভিশাপ মনে করে, পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থা নারীদের কোণঠাসা করে রাখে, যেখানে মেয়েদের বেড়ে উঠতে হয় ধর্ষনের ভয় নিয়ে; আবার পুরুষকে নিতে হয় দুনিয়ার ভার, যারা কিনা কাঁদতেও পারবে না; যেখানে ভালবাসার শাস্তি মৃত্যু; যেখানে গরীবের সন্তান একটা চকলেট পায় না; যেখানে নিষ্ঠুর, সবল, হৃদয়হীন মানুষেরাই সর্বত্র জয়ী হয়— এমন একটা পৃথিবীতে তার সন্তানের জন্ম দেওয়া টা কি ঠিক হবে? যেখানে আবার তার সন্তান হবে পিতৃ পরিচয়হীন! অনেক বাঁধা পেরিয়ে, অনেক কষ্ট সহ্য করে জন্ম দিতে চাওয়া সন্তানই যদি কোনদিন তাঁকে প্রশ্ন করে বসে—‘কেন তুমি আমাকে এই পৃথিবীতে নিয়ে এলে? কেন? কে বলেছিল তোমাকে?’ তখন সে কি করবে? একা হওয়ার জন্য অনেক কষ্ট সহ্য করতে হবে জেনেও এই নারীটি সমগ্র পৃথিবীর বিপরীতে গিয়ে অপেক্ষা করতে থাকে তার সন্তানের জন্য। হজম করে সকলের বাঁকা দৃষ্টি আর কঠিন কঠিন সব কথা। যেখানে একজন গর্ভবতী নারী সকলের নিকট থেকে অনেক শুভেচ্ছা, ভালবাসা ও সাহায্য পায় সেখানে তার সাথে কেউ ন্যূনতম ভাল ব্যাবহার টুকুও করে না! তবু নিজের সন্তানের জন্য সে সবকিছু মেনে নেয়। বিসর্জন দেয় নিজের ক্যারিয়ার, ভুলে যায় নিজের ভাললাগা মন্দলাগা। এতকিছুর পরেও যখন সে জানতে পারে তার সন্তানের বৃদ্ধি ঠিকমত হচ্ছে না, তখন তার মন হঠাৎই বিদ্রোহ করে ওঠে। সে তার সন্তান কে নিজের শরীর ছেড়ে দিতে পারে, কিন্তু নিজের মন কে নয়। তাছাড়া শুরুর দিকে সন্তানের প্রতি যে ভালবাসাটুকু ছিল কঠিন বাস্তবতার সম্মুখীন হয়ে তা ক্রমেই কমতে থাকে এবং সাময়িকের জন্য তা যেন একেবারে হারিয়েই যায়! সে আবার সিগারেট-হুইস্কি খাওয়া শুরু করে, নতুন করে কাজে যোগ দেয়। অনিয়মের জন্য তার রক্তপাত হয়। পুরিপূর্ণ বিশ্রামের জন্য হাসপাতালে থাকতে শুরু করে। কিন্তু এইবার আবার একাকিত্ব তাকে বিষিয়ে তোলে। আবারও নতুন করে অস্বাভাবিক জীবন শুরু করে। তারপর আবার ডাক্তারের দ্বারস্থ হতে হয়। তখনই তাকে শুনতে হয় সবচাইতে কষ্টের কথাটি। ডাক্তার তাকে নিশ্চিত করে তার সন্তান টি সপ্তাহ দুয়েক আগেই মারা গেছে। যাকে নিয়ে এত স্বপ্ন দেখা, যার জন্য দিনগুনে এত গুলি রাত পার করা, সে এই ভাবে তাকে ফাঁকি দিল? সারা পৃথিবী মুহূর্তের মধ্যে ওলোট পালোট হয়ে যায়, তারপর সে জ্ঞান হারিয়ে ফেলে। তার পরের গল্প টা করুণ! অ্যালকোহলের মধ্যে ভাসতে থাকা একটা ডিম সদৃশ বস্তু, যেটা হতে পারত একটা মায়ের সবচেয়ে আদরের সন্তান, যেটা হতে পারত একজন অবিবাহিত মায়ের জীবন যুদ্ধের ঢাল! কিন্তু তা হয় নি, একটা ডিমের চেয়ে বড় কিছু সে হতে পারেনি। হাসপাতেলের বিছানায় মৃত্যুর সাথে পাঞ্জা লড়ছে জীবনযুদ্ধে হেরে যাওয়া এক মা। সন্তান মরে গেছে, হয়ত সেও মরে যাবে। কিন্তু সে বাঁচতে চেয়েছিল। অবলম্বন হিসেবে চেয়েছিল ধরার জন্য একটা হাত। কিন্তু নিষ্ঠুর পৃথিবীর কেও তার দিকে হাত বাড়িয়ে দেয় না, হাত বাড়ায় না তার নিজের সন্তানও!
Fiction
0
একবার না, বহুবার। এবং যতবারই পড়েছি, অন্যরকম লেগেছে আমার কাছে। এখন পর্যন্ত পছন্দের তালিকায় শীর্ষে থাকা একটি বই। বইটি প্রথম যখন পড়া শুরু করি, মনে হয়েছিলো, শুধু শুধু টাকাগুলো জলে গেল। ১০-১২ পৃষ্ঠা পড়ে রেখেও দিয়েছিলাম কিছুদিন। কিন্তু কিছুদূর এগোতেই বুঝতে পারলাম বইটার আসল মর্ম। বইটির প্রেক্ষাপট মোঘল আমলের হওয়ায় কিছু শব্দ প্রথম প্রথম নতুন ও দুর্বোধ্য লাগতে পারে। কিন্তু ৪০ পৃষ্ঠার পর থেকে আয়ত্তে চলে আসবে এবং ভালো লাগবে। ময়ূর সিংহাসন বইটি ইতিহাস, প্রেম, রাজনীতি, যুদ্ধের এক পার্ফেক্ট কম্বিনেশন। পড়ে দেখতে পারেন। আপনি মুগ্ধ হবেন।
Fiction
0
বই: অাশাবরী জনরা: সামাজিক উপন্যাস লেখক: হুমায়ূন অাহমেদ প্রকাশক: সময় প্রকাশন প্রকাশ কাল: একাদশ মুদ্রন, ফেব্রুয়ারি ২০১১ পৃষ্ঠা: ১০২ প্রচ্ছদ: সমর মজুমদার মুদ্রিত মূল্য: ১২০৳ কাহিনী সংক্ষেপ: "যদি আজ বিকেলের ডাকে তার কোন চিঠি পাই? যদি সে নিজেই এসে থাকে যদি তার এতকাল পরে মনে হয় দেরি হোক, যায়নি সময়?" অাশবরী মূলত গানের রাগ, তবে এ গানেই যেন চিরায়ত অপেক্ষার কাহিনী বর্ণানা হয়ে যায়। নিম্মমধ্যবিত্ত গল্পের চিত্র ফুটিয়ে তুলতে লেখকে জুড়ি মেলা ভার। তেমন ই এক পরিবারের কাহিনী ফুটে উঠেছে এখানে। গল্পের মূল চরিত্র রেনু নিজেই বর্ননায় প্রথমেই শুরু করে পরিবারের নিত্য প্রয়োজনীয় ক্ষুদ্র এক অভাবের কাহিনী তিন মাস ধরে ঘরে অায়না না থাকা দিয়ে। অার এতসব অভাবের মধ্যেও নিজেদের মানিয়ে নেয়ার এক দারুন অভিনয় করে যায় পরিবারের প্রতিটা মানুষ। চরিত্র বিশ্লেষণ, বাবা যে কিনা পরিবারের প্রতি ভীষণ উদাসীন অার বাইরের ভ্রমনের যার নিষিদ্ধ অাকর্ষণ, বড় ভাই রঞ্জু মতে যে ভদ্র ভাষার ফেরিওয়ালা। ব্যবসায়ের নামে মাঝে মাঝে বাড়ি থেকে নিরুদ্দেশ হয়ে যায় অনেক দিনের জন্য। শেষবার বরিশালের নাম করে বের হদহয়ে যাওয়ার পর অার ফিরে অাসে না। নানা রকম গুজব অার অনিশ্চয়তায় সবাই দিনগোনে। বড় বোন অরু অসম্ভব সুন্দরী তবে গোপন কোন দুঃখ কুড়ে কুড়ে খায় প্রতিনিয়ত। প্রায়ই মাঝরাতে কান্না শোনা যায়, কিন্তু জানা হয় কিসের এত কষ্ট অরুর। বড় ভাই রঞ্জু, সবার প্রিয় পাত্র অার বাবা কাছে ফানি ম্যান, বেকারের বোঝা ঘাড়ে নিয়ে সংসারের ঘানি টেনে যাচ্ছে। সবার সাথে হাস্যরসাত্মক গল্পে মেতে থাকলেও যার ভেতরটা ঘুনেপোকায় খেয়ে যায় প্রতিনিয়ত। নিজের গল্প গুলো শেয়ার করাত মত একমাত্র অাভা যার অাশ্রয়। এছাড়াও পাশের বাড়ির দুলু অাপা কিংবা বাড়িওয়ালা চাচা যার মৃত্যু একান্ত কাছে বসে দেখেছে রেনু। সবকিছু বুঝেও না বোঝার ভান করে থাকা পরিবারে সবার ছোট মেয়ে। প্রতিদিন অভাবের সাথে যুদ্ধ করে বেঁচে থেকে যে বাবাকে দিকভ্রান্তের মত যে খুঁজে বেড়ায়। এভাবেই নিপুন শব্দ গাঁথুনিতে অাস্তে অাস্তে এগিয়ে চলে গল্প। নিজস্ব মতামতঃ এক কথায় চারপাশের পরিবেশটাকে চোখ বুজে অনুভব করার মত গল্প অাশাবরী। বইয়ের শুরুতে লেখক বলেছেন এটা দ্বিতীয় সংস্করণ যাতে মূল গল্পের অনেকটা পরিবর্তন করা হয়েছে। মূল গল্পটা কেমন ছিল সেটা জানার অাগ্রহ তাই একটু বেড়ে গেল।
Fiction
0
এটি দ্য আদার সাইড অফ মিডনাইট এর সিক্যুয়েল। সুদর্শন যুদ্ধ নায়ক যার প্রতি প্রতিশোধই ছিল সেই ফরাসী নারীর অন্যতম লক্ষ, তার স্ত্রী ক্যাথেরিন বিরাট এক চ্যারেন্জ হয়ে দাড়ায় গ্রীক বিজনেস টাইকুন ডেমিরিসের বিরূদ্ধে। ডেমিরিস হত্যা করতে চাইছে ক্যাথরিনকে। কারন এক ভয়ঙ্কর সত্য ক্যাথরিন ছাড়া আর কেউ জানেনা।
Thriller
1
মওদুদ আহমদ, ব্যারিস্টার, বাংলাদেশ সরকারের একজন সিনিয়র মন্ত্রী এবং বর্তমানে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বে নিয়োজিত আছেন। এর আগে তিনি রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সরকারের উপ-প্রধানমন্ত্রী ছিলেন। তিনি বাংলাদেশ সরকারের প্রধানমন্ত্রী ও উপ-রাষ্ট্রপতি পদেও দায়িত্ব পালন করেছেন। একজন দক্ষ পার্লামেন্টারিয়ান হিসেবে তাঁর খ্যাতি সর্বজনবিদিত। বাংলাদেশের সমকালীন রাজনীতিতে তিনি যেমন প্রজ্ঞার পরিচয় রেখেছেন, তেমনি দেশীয় ও আন্তর্জাতিক রাজনীতি সম্পর্কে নিয়মিত লিখে চলেছেন। জনাব আহমদ জার্মানীর হাইডেলবার্গ বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৭৬, ১৯৮০ ও ১৯৯৬), অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৯৩) ও হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় (১৯৮১ ও ১৯৯৮) সমূহের ফেলো। তিনি দি জর্জ ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের (১৯৯৭) ইলিয়ট স্কুলের একজন ভিজিটিং প্রফেসর হিসেবেও অধ্যাপনার কাজ করেছেন। ইউপিএল থেকে তাঁর প্রকাশিত বই: Bangladesh: Constitutional Quest for Autonomy (1976), Bangladesh: Era of Sheikh Mujibur Rahman (1983), Democracy and the Challenge of Development: A Study of Politics and Military Interventions in Bangladesh (1995), এবং South Asia: Crisis of Development – The Case of Bangladesh (2002)| প্রথমোক্ত ৩টি বইয়ের বাংলা অনুবাদ বাংলাদেশ: স্বায়ত্বশাসন থেকে স্বাধীনতা, বাংলাদেশ: শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল এবং গণতন্ত্র ও উন্নয়নের চ্যালেঞ্জ - প্রেক্ষাপট: বাংলাদেশের রাজনীতি ও সামরিক শাসন ইউপিএল থেকেই যথাক্রমে ১৯৯২, ১৯৮৩ ও ২০০০ সালে প্রকাশিত হয়েছে। ১৯৮৩ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের শাসনকাল নিয়ে নিজের লেখা ‘এ্যারা অব শেখ মুজিবুর রহমান(Era of Sheikh Mujibur Rahman) তার লেখা প্রথম বই। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে বাংলাদেশি রাজনীতিবীদদের মধ্যে সম্ভবত সেরা লেখাটা লিখেছেন বিএনপি নেতা ব্যারিষ্টার মওদুদ আহমেদ। তার ভাষায়..…… "শেখ মুজিবের আবির্ভাব বাংলাদেশে জাতীয় ইতিহাসের সবচেয়ে বড় ঘটনা। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়েই তার সমাধি রচিত হয়নি। বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে তিনি রুপকথার নায়কের মতো ভাষ্কর হয়ে থাকবেন। বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম ও জাতীয় পরিচিতি নির্ধারনে তার চেয়ে বেশি অবদান রেখেছেন এমন কাউকে খোজে পাওয়া কঠিন হবে। শেখ মুজিব ছিলেন সেই ব্যক্তি জীবনব্যাপী যিনি এ জাতির স্বার্থে তার স্বপ্ন বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা চালিয়ে গিয়েছিলেন, বিরাজ করছিলেন এ জাতির আশা আকাঙ্ক্ষার মুর্ত প্রতীক হিসাবে। তিনি ছিলেন সেই বাঙ্গালী জাতীয়তাবাদের প্রতীক,যা এক সর্বব্যাপী আন্দোলনের রুপ পরিগ্রহ করে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ও সার্বভুমত্বের সোপান রচনা করে। পরবর্তিকালে বাংলাদেশের সামগ্রিক পেক্ষাপটে যতই পরিবর্তন আসুক না কেন,আর আভ্যন্তরীন ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কে পটপরিবর্তনের যত লীলাখেলাই চলুক না কেন, জাতীয়তাবাদের আন্দোলনের প্রধানতম নেতার আসন থেকে শেখ মুজিবকে বিচ্যুত করা সম্ভব হবেনা"। তাই জাতির এ সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা ও তার শাসনকাল সম্পর্কে এ বইটি আপনার জ্ঞানের ঝুলিতে এনে দেবে অন্য এক মাত্রা (তথ্য ও লিখা সংগ্রহীত)
Political
3
কাহিনীসংক্ষেপঃ স্কুলে অষ্টম শ্রেনীর ক্লাসে ইবু, সাচ্চু, সাজু, অনিক এই চারজন ভালো বন্ধু। ইবু এখানে গল্পকথক, সাচ্চু বই-টই বিশেষ পড়েনা, তবে দুনিয়ার সব খবর রাখে। অনিক মোটামুটি ভালো ছাত্র, বই-টই পড়ে। সাজু ক্লাশের ফার্স্ট বয়, সবচেয়ে ভালো ছাত্র। একটু লাজুক টাইপের, সবাইকে তুমি তুমি করে বলে। সেই স্কুলের অষ্টম শ্রেণীতে একদিন ভর্তি হয় নতুন একটা ছেলে, নাম খায়রুল হাসান ওরফে সেন্টু। শুকনো পাতলা একটা মানুষ, মাথাভর্তি এলোমেলো চুল, মুখ গম্ভীর। সেন্টু হুইলচেয়ার ছাড়া চলতে পারে না। দুটো পা নীচ থেকে প্যারালাইজড। ওপরে যে চার বন্ধুর কথা লেখা হলো, তাদের সাথে সেন্টুর বন্ধুত্ব হতে খুব বেশি সময় লাগেনা। ক্লাসের গুন্ডা বকর, যে কী না বহুবছর ধরে ক্লাস এইটে আটকে আছে তাকে টাইট দেয়া, গরিলার মত দেখতে ভূইয়া স্যারের অপকর্ম ফাঁস করে দেয়া, জাল নোটের কারবারিকে ধরিয়ে পুলিশে দেয়া.. এগুলো করতে করতেই দিন কেটে যায় তাদের। সেন্টু একসময় গোটা ক্লাসের হিরোতে পরিণত হয়। এরকম একটা সময়ে হঠাৎ সেন্টু স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। কিন্তু কেন? ব্যক্তিগত মতামতঃ জাফর ইকবাল স্যারের কিশোর উপন্যাস আর সায়েন্স ফিকশম পড়েই ছোট থেকে বড় হয়েছি। বাংলাদেশে আমার অত্যন্ত প্রিয় লেখক তিনি। তবে, বেশ কয়েকবছর ধরে তাঁর কিশোর উপন্যাসগুলো অতটা ভালো হচ্ছিলো না। গত বইমেলায় সে অচলাবস্থা ভেঙ্গে যায়। "গ্রামের নাম কাঁকনডুবি" যথেষ্ট জনপ্রিয়ও হয়। তবে, "স'তে সেন্টু" আমার কাছে অতটা ভালো লাগেনি। এই উপন্যাসের শেষে টিপিক্যাল ক্লাইম্যাক্স ছিলোনা, একটু ভিন্নতা বোধহয় আনতে চেয়েছিলেন তিনি। কারণ, তার প্রায় সব কিশোর উপন্যাসের শেষেই একটা ক্লাইম্যাক্স তিনি দেন। শেষের কয়েকটা উপন্যাসে, এই বিষয়টা একটা বিরক্তিতে পরিণত হয়েছিলো। সেদিক থেকে এ বইটা একটু ভিন্নরকম। সবচেয়ে বড় কথা, উপন্যাসের শেষে খুব সুন্দর একটা বার্তা দেয়া হয়েছে। বার্তাটা যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক, যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়েছে। বর্তমান প্রেক্ষাপটে দাঁড়িয়ে উপন্যাসের মূলচিন্তাটা আসলেই সময়োপযোগী ছিলো। আমার যেটা মনে হয়, শিশু-কিশোরদের এটা ভালোই লাগবে। বড় হয়ে গেছি, আগের মত খুব সহজেই মুগ্ধ হতে পারিনা, তাই হয়তো আমার খুব একটা ভালো লাগেনি। তবে, বইটা শেষ করেছি একটানে। বইয়ের কোনো কোনো অংশে বেশ হেসেছি, কোনো কোনো অংশে বেশ বিরক্তও হয়েছি, কোনো কোনো অংশ আরোপিত মনে হয়েছে। যাই হোক, পাঠকের নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গির ওপরে নির্ভর করছে যে, বইটা তার কেমন লাগবে। উপন্যাসের মূল বার্তাকে বিবেচনা করলে, গোটা উপন্যাসটা মোটামুটিমানের ছিলো। স্যারের কাছ থেকে আরো ভালো কিছু পাবার প্রত্যাশা থাকবো :D বইয়ের রকমারি লিঙ্কঃ https://www.rokomari.com/book/112869/স’তে-সেন্টু
Childrens-Book
2
কাহিনী সংক্ষেপঃ শুভপুর গ্রামে অদ্ভূতভাবে খুন হলো একজন। গ্রামের চেয়ারম্যানের মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লো অস্বাভাবিকভাবে। তার চিকিৎসার জন্য ঢাকা থেকে আসলো এক তরুণ ডাক্তার। প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে শুরু হলো চিকিৎসা। এর মাঝে গ্রাম থেকে কিছুদিনের জন্য নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন এক লোক। তার অন্তর্ধানের মাঝেই খুন হলো আরও একজন। খুন হয়ে যাওয়া মানুষদের শরীরে মিললো বিশেষ এক চিহ্ন, আর তা তদন্ত করতেই শুভপুর এলো ডিবির অফিসার। নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি গ্রামে ফিরে এলেন নতুন এক কাজের দায়িত্ব নিয়ে, যা শেষ করতে পারলেই তিনি লাভ করবেন অসীম ক্ষমতা। সময়ের সাথে উন্মোচিত হতে লাগলো, চেয়ারম্যানের মেয়ের অসুস্থ হওয়া এবং খুনগুলোর সাথে রয়েছে হারিয়ে যাওয়া এক মেয়ের সম্পর্ক। আর এই সম্পর্কের সূচনা আরও গভীরে, এক অন্ধকারময় জগতে। তমিস্রা'র ভয়াল ভূবনে আপনাদের নিমত্রণ। বাজার থেকে ফেরার পথে রবি খুন হয়, অস্বাভাবিক ছিলো খুনটা, চোখে ছাতা গাঁথা ছিলো। যে খুন করেছে তার শারীরিক শক্তি প্রচুর বোঝাই যায়। পুলিশ আসে তদন্ত করতে, লাশ পাঠিয়ে দেয়া হয় হাসপাতালে, ডোম বুক চিরে রেডি করে রাখে। ডাঃ মারুফ ময়নাতদন্ত করে কিন্তু সবশেষে খেয়াল করে লাশের গায়ে একটা বিশেষ চিহ্ন, মনে হয় লোহা গরম করে ছ্যাঁকা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ছবি তুলে রাখে সে কিন্তু রিপোর্টে সে কথা কেন জানি উল্লেখ করে না। আসগর মাহতাব তার চেলাদের নিয়ে বসে আছে, কিছুটা চিন্তিত কেন কে জানে... চেয়ারম্যানের মেয়ে সন্ধ্যার সময় পুকুর পাড়ে পানিতে পা ডুবিয়ে বসে আছে। হঠাৎ কে যেন পা ধরে টান দিলো... তারপর থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে দিলো, কিছুতেই সারে না। কেশব রায়ের অনুরোধে ডাঃ ইমরান আসে চিকিৎসা করতে। কিন্তু সে একটু বেশিই চুপচাপ। আশেপাশে পোড়া গন্ধ পায়, কিসের গন্ধ...? সোহেল হঠাৎ করেই মারুফের সাথে দেখা করতে আসে। রাতে মারুফের বাসায় থেকে যায়। মারুফ সবকিছু সোহেলকে জানায় কারণ সে জানে সোহেলের সিম্বলিজমের প্রতি আগ্রহের কথা। তদন্ত করতে শুভপুর চলে যায় সোহেল। কাজ শুরু করে দেয় কিন্তু কোনও ক্লু পায় না। কিভাবে এগোবে বুঝতে পারে না সে। অবশেষে সুযোগ মিলে যায়, কাজ শুরু করে দেয় সে। প্রচুর তথ্য পেতে থাকে একে একে... নাহ... আর কিছু বলবো না, তাহলে স্পয়লার হয়ে যাবে। কাহিনী মোটামুটি, সেই একই সিম্বলিজম, কালো জাদু, শয়তানের সাথে যোগাযোগ এইসব। তবে লেখা ভালো। লেখকের আগে কোনও বই আছে কিনা জানি না। বইয়ের বেশ কিছু জায়গায় ব্যাপারে খটকা লেগেছে। যেমন; ৬৯ পৃষ্ঠায় - পূজা/পুজা - কোনটা হবে? ১২০ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে - কাঁচের পানি ভর্তি জগ (নাকি হবে পানি ভর্তি কাঁচের জগ অথবা কাঁচের জগ ভর্তি পানি) ১২৩ পৃষ্ঠায় - পলাশ কিভাবে বাংলোর দিকে যায়! যাওয়ার কথা তো সোহেলের। পলাশ তো শুভপুর গ্রামের বাসিন্দা। ১২৮ পৃষ্ঠায় - মেঘ গুরগুর করে নাকি গুড়গুড় করে?
Thriller
1
ভোর বেলায় মনজুর সাহেবের ঘুম ভেঙে যায় শো শো শব্দ শুনে। ঘুমের ঘোরে শব্দটা শুনে তার মনে হয় বাইরে হয়তো প্রচন্ড ঝড় হচ্ছে- এ তারই আওয়াজ। ঘুমের রেশ কেটে যাওয়ার পর তার মনে পড়ে, আজ নিতুদের ঘুরতে যাওয়ার কথা। তাই অন্ধকার থাকতেই নিতু আর তার মা রেডি হতে শুরু করেছে। আর শো শো শব্দটা ছিলো হেয়ার ড্রায়ারের। নিতু মনুজর সাহেব আর রেবেকার এক মাত্র মেয়ে। ষোল বছরের কিশোরী। রেবেকা এবং নিতু মনজুর সাহেবের বন্ধু জহিরের সাথে বেড়াতে যাবে রামসাগর। রেবেকা এবং নিতু ঘুরে বেড়াতে দারুণ পচ্ছন্দ করে। কিন্তু কর্ম ব্যস্ততার কারণে তাদের ঠিক সময় দিয়ে উঠতে পারেন না মনজুর সাহেব। তাই তাদের প্রতিটা ভ্রমণে সঙ্গী হয় মনজুর সাহেবের বন্ধু জহির। আর এসব নিয়ে দিনকে দিন দূরত্ব বাড়ছে রেবেকা আর মনুজর সাহেবের। জহির বিপত্নীক। স্ত্রী মীরা মারা যাওয়ার বহুদিন গত হলেও দ্বিতীয় বিয়ের কথা মাথায় আসে নি জহিরের। ভালোই আছে সে। নিজের মতো নিজের থাকা, নিজের মতো নিজের বাচাঁ। যাই হোক, প্রতিবারের মতো এবারও নিতু, রেবেকা, জহিরের ভ্রমণসঙ্গী হওয়ার কথা ছিলো না মনজুর সাহেবের। কিন্তু শেষ সময়ে মত বদলান। বের হয়ে পড়েন ওদের সাথে। জহিরের সাথে স্মৃতিচারণ করতে করতে এগিয়ে যাওয়া হচ্ছিলো। কিন্তু পথিমধ্যে ঘটলো এক দূর্ঘটনা। ঢাকা-আরিচা রোডে এ্যাকসিডেন্ট হওয়ায় সমস্ত গ্রামবাসী রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে। এই ঝামেলা থেকে কাটিয়ে না এসে উল্টো জড়িয়ে পড়লো মনজুর সাহেব, জহিররা...!
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা আমরা একটু লক্ষ্য করলেই দেখতে পাবো, আমাদের আশেপাশে সুবিধাবঞ্চিত অনেক মানুষ আছে। তারা তাদের নানা স্বপ্ন পূরণে ব্যর্থ হয় মূলত আর্থিক সংকটের জন্য। তারা নিজেরা নিজেদেরকে হীন ভাবতে শুরু করায় শোষক শ্রেণির মানুষেরাও নানাভাবে তাদের উপর অত্যাচার করে। এ বৈষম্যটা আমাদের সময়ে যেমন আছে, রিটিনদের সময়েও তেমন আছে। আচ্ছা, এই বৈষম্যটা যদি চরম রূপ ধারণ করে, তখন কী হবে? রিটিনদের পৃথিবীতে এই বৈষম্যটা চরম আকার ধারণ করেছে। তাই সমগ্র মানবজাতিকে দুটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে— এ গ্রুপ এবং সি গ্রুপ। সি গ্রুপের মানুষদেরকে সর্বদা এটাই বোঝানো হয়েছে যে তাদের জন্মই হয়েছে কায়িক শ্রম করার জন্য আর তাদের মস্তিষ্ক লেখাপড়ার জন্য উপযুক্ত নয়। তাদের জন্য আইন করে লেখাপড়া করা/ গবেষণা করা/ জ্ঞান অন্বেষণ করা ইত্যাদি নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু রিটিন ভিন্নধর্মী এক যুবক। সে সি গ্রুপের মানুষ হয়েও লেখাপড়া করতে চায়, তার মূল আগ্রহ সময় পরিভ্রমণকে নিয়ে। তবে এজন্য রিটিনকে সহ্য করতে হয় নানা বাধা। একবার তাকে নিরাপত্তাকর্মীরা ধরে নিয়ে যায় শুধুমাত্র সময় পরিবহন নিয়ে আগ্রহ প্রকাশ করার জন্য। এই বন্দী জীবন থেকে মুক্তি পেতে রিটিন পাগল হয়ে উঠে। তখন সে প্রবেশ করে আপাতদৃষ্টিতে এক অপরাধ জগতে, আসলে সেখানে ব্যপ্ত হচ্ছে সি গ্রুপের মানুষদের পৃথিবীর এই বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনের বীজ।রিটিনও যোগ দেয় তাদের দলে।রিটিন তার শরীরের ট্র্যাকিওশন যন্ত্রটা খুলে ফেলে, মুক্ত হয়ে যায় শোষক শ্রেণীর নিয়ন্ত্রণ থেকে। একের পর এক মিশনে সফল হতে থাকে। কিন্তু তখন সামনে এসে দাঁড়ায় চূড়ান্ত মিশন এবং একমাত্র সেই মিশনে জয়ী হলেই সম্ভব পৃথিবীকে বৈষম্যমুক্ত করা। কিন্তু সে মিশনে সফল হওয়া যে এখনকার সময়ে সম্ভব না! অতীতে গিয়ে সেটা করা সম্ভব। তখন শুরু হয় সেই দুর্দিনের অভিযাত্রীদের সময় পরিভ্রমণের চেষ্টা। তারা খুঁজে পায় এমন কোনো নিদর্শন যার দ্বারা তারা নিশ্চিত হতে পারে যে রিটিন সময় পরিভ্রমণে সফল হতে পারবে এবং একমাত্র রিটিনকে দ্বারাই এটা সম্ভব। কী ঘটেছিলো তারপর? সময় পরিভ্রমণ খুবই জটিল একটা ব্যাপার। রিটিন কি পেরেছিলো অতীতে যেতে? সে কি সফল হয়েছিলো তার সেই মিশনে? পৃথিবী থেকে কি মানুষের বৈষম্য দূর করা সম্ভব হয়েছিলো? জানতে হলে পড়তে হবে বইটা। ব্যক্তিগত অনুভূতি: বইটা আমার না, আমার এক বান্ধবীর। ও আমাকে এই বইটা দিয়ে বলেছিলো বইটা পড়ে দেখতে- খুব সুন্দর নাকি বইটা! বইটা আমি বইমেলা থেকে কিনি নাই কারণ বইয়ের নামটা আমার কাছে অতটা ইন্টারেস্টিং মনে হয়নি, এছাড়া প্রচ্ছদটাও কিছুটা কার্টুন-কার্টুন। আমি ভেবেছিলাম হয়তো কোনো শিশুতোষ সাইন্স ফিকশন হবে। তবে বইটা পড়ে বুঝতে পারছি যে ওর কথাটা না শুনলে কী বড় মিস করতাম! খুব আনন্দ পেয়েছি। বইটাতে টাইম ট্র্যাভেলের মতো জটিল একটা বিষয়কে মোটামুটি সহজ করেই বর্ণনা করা হয়েছে। বইটা পড়ার সময় একবারও বিরতি নেইনি। এছাড়া রিটিনের ভালোবাসা দেখে আমি মুগ্ধ- এ পৃথিবীর প্রতি আর তানুস্কার প্রতি! সব শেষে একটা কথা বলতে চাই, রিটিনদের যে অবস্থা হয়েছে, তার জন্য মূলত দায়ী মানুষদের মধ্যকার বৈষম্য। আমাদের পৃথিবীতে যেই হারে মানব বৈষম্যের হার বেড়ে চলছে, রিটিনদের মতো আমাদেরও এমন অবস্থা হতে হয়তো বেশিদিন বাকি নেই। তাই বলবো, আসুন আমরা সবাই মিলেমিশে বসবাস করি, বৈষম্যমুক্ত সমাজ গড়ি।
Science-Fiction
4
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই - কয়েকটি মৃত্যু লেখক - জহির রায়হান প্রকাশনী - অনুপম প্রকাশনী মূল্য - ৬০/- (মুদ্রিত) রেটিং - ৪/৫ প্রথম প্রকাশ - ১৯৯৮ ..... একটা মানুষ যখন নিশ্চিত মৃত্যুর সামনে তখন তার মনের চিন্তা ভাবনা কেমন হয়? কেউ ভাবে তার পরিবার নিয়ে, কেউ অর্থ, কেউ পরকাল নিয়ে ভাবে আবার কেউ ব্যস্ত হয়ে যায় হিসাবের কাগজে। এটাই জীবনের সৌন্দর্য্য। মৃত্যু আছে বলেই হয়ত আমরা ভাবতে শিখি, চলতে শিখি, কিছু একটা করতে শিখি। নির্মম আর ভয়াবহ একটি সৌন্দর্য জহির রায়হান কালিতে তুলে এনেছেন অসাধারণ ভঙ্গিতে। বইটার নাম 'কয়েকটি মৃত্যু' ... বৃদ্ধ আহমদ আলী শেখ। তিন জন সুপুত্রের বাবা, একজন স্ত্রী, পাত্রস্থ করা মেয়ে, তিনজন গুণবতী পুত্রবধূ, একজন বিশ্বস্ত চাকর, অবসর আর নিজের একটা বাড়ি। জীবনের পড়ন্ত বেলায় আহমদ আলী শেখ তাই অনেক সন্তুষ্ট। খোদার কাছে শুকরিয়া জানাতে কার্পণ্য করেন না। এরইমাঝে একদিন তার মেয়েও হাজির শ্বশুড়বাড়ি থেকে। সাথে ছিলেন আহমদ আলীর শ্যালক মফিজ আর তার স্ত্রী। এমনই পরিপূর্ণ রাতে তিনি স্বপ্ন দেখেন অশুভ কিছুর। অনেক বছর আগে যে স্বপ্ন কেড়ে নিয়েছি তার বাবা এবং এক চাচা। শুরু হয় পারিবারিক হিসেবের দ্বন্দ। সবাই ব্যস্ত অতীত, বর্তমান আর ভবিষ্যতের হিসেবে। নামাযও পড়েন কেউ কেউ। এভাবেই এগিয়ে যায় জহির রায়হানের আরেকটি অসাধারণ লেখা। ... বিশেষ কিছুই বলার নেই। এরকম ভালো বইয়ের জন্যই আসলে আমাদের অপেক্ষা। এমন বই পাইনা বলেই আমাদের আক্ষেপ। জহির রায়হানকে ধন্যবাদ। স্বল্প জীবনে আমাদের এতকিছু উপহার দেয়ার জন্যে।
Fiction
0
মানবজনম-সাদাত হোসাইন-বুক মিভিউ...... আগের বইগুলো পড়ার সময়ে লেখকের উপর যে রাগ ক্ষোভ ছিল তা এই বই থেকে তুলে নিয়ে নিলাম। দীর্ঘ তিন সপ্তাহ সময় লাগিয়ে বইটি পড়েছি। কিছু কিছু অংশ পড়ে চুপ করে শুয়ে থেকেছি। ভেবেছি-যে পরে কি হতে পারে। সহজ সাধারন কপচানো উপন্যাস অনুযায়ী অনেক কিছু ভেবেছি। কিন্তু বইয়ের দীর্ঘতা-সময়ের ব্যপ্ততা তা অনুমানযোগ্য হতে দেয় নি। তাই বড় ও বেশি দামী বই লেখার জন্য লেখকের উপর যে রাগ ছিল ক্ষোভ ছিল তা তুলে নিলাম। হয়তো দুইশ পৃষ্ঠার বই হিসেবে লিখলে, কিংবা প্রতি বইমেলায় দুইতিনটা বই বের করলে আমরা খুশি হতাম-কিন্তু এই যে চরিত্রের গভীরতা, তাদের মানসিক বৃষ্টি, হাতের কদম ফুলের ছোয়া, তা কি এভাবে বুঝতে পারতাম। মনে হয় পারতাম না। সাদাত হোসাইন তার আলাদা পাঠক গোষ্ঠী সৃষ্টি করতে চলেছেন বলাই যায়। যারা প্রতিবছর তার বই পড়বার জন্য অপেক্ষা করবে। তবে মজার ব্যাপার হল-দুই তিনটা বই পড়ার পর আমার মত যারা ভাবালুতা লাইন পড়তে অপছন্দ করে, কিংবা মনটা খারাপ হয়ে যাবে ভেবে সেগুলো পড়তে চাননা, তারাও বুঝে যাবেন-আচ্ছা ঠিকাছে-এই কয় লাইন না পড়লেও চলে। তৈয়ব উদ্দিন খা, আব্দুল ফকির, নয়ন, হেমা, পারুল যেন সেই মানবমনের স্বপ্নের মত। দীর্ঘ তিন সপ্তাহের এই যাত্রায় আমারই যেন মায়া পড়ে গিয়েছিল পারুলের উপর, নয়নের উপর। সাপের মত ভয় করছিল আব্দুল ফকির কে। তবে শেষ ৫০ পৃষ্ঠা টানা শেষ না করে পারিনি। সব কিছুতো সেই চক্রই তাই আর ধরে রাখিনি। কোহিনুরকে মনে হয়েছে, আমোদি বেগমকে মনে হয়েছে-সেই বটবৃক্ষের মত-যারা সব কিছু সয়ে গেছে, দেখে গেছে-শেষে এসে ভেঙ্গে গিয়ে বটতলা ভেঙ্গে সেই হাড়ি বের করে দিয়েছে। অথচ কিনা তৈয়ব উদ্দিন খা নিজেকে বট ভেবে বসে আছেন। পারুলের প্রতি অপরিসীম মায়া জমা থাকল। তার কষ্ট বোঝার ক্ষমতা এই অবোধ পাঠকের নেই। সহজ সরল হাসিমুখের এই মেয়েটির দুঃখই শেষ পর্যন্ত মনকে বেশি ভাবিয়েছে। ভালো লেগেছে-চরিত্র গুলোকে গড়তে লেখক অনেক সময় নিয়েছেন বলে। আবার একসাথে চার পাচটি সত্ত্বার সাথে ক্রমাগত কথা বলে যাওয়ায়, একই ভাবনায় অনেকক্ষন ডুবে থাকতে হয় নি। মিলে মিলে সব শেষে এক হয়ে যায়-যদিও সারা বই জুড়ে তার একটা যোগসূত্র ছিল। আরশিনগর উপন্যাসের ধারার একটু ছোয়া ছিল বইতে, তবে কাহিনীর বিশালতায় মানবজনম লেখককে ছাড়িয়ে গিয়েছে। ভালো লেগেছে বইটি। “ আচ্ছা এই মানবজনম যদি সত্যি সত্যিই স্বপ্ন হয়, তখন কি এই মানবজন্মের এই এত এত মানুষ, এত এত সম্পর্ক, অনুভূতি, এদের জন্য তার খারাপ লাগবে? নিশ্চয়ই লাগবে। স্বপ্ন শেষ হয়ে গেলেও তো তার রেশ থেকে যায়। মৃত্যু কি তবে এই মানবজন্মের স্বপ্নভংগ হয়ে অন্য কোনো জন্মে জেগে ওঠা?” বইটি থেকে এই লাইনগুলি না তুলে পারলাম না।
Fiction
0
everyone thinks wrong about the book by seeing the size in the screen. This book is meant for playgroupers. Its full of colourful pics and huge size of font. The size of the book is like a single fairy tale book for children.PLsss dont buy if you are 9 up. this book is perfect for younger kids like 7 or 8.
War
5
লেখক এর কাহিনী দিয়ে শুরুটা। লেখক এর মামা তো ভাইয়ের বিয়ে। তার এই ভাইয়ের জন্য অনেক পাত্রী দেখা হয়েছে কিন্তু কোন পাত্রীইই পছন্দ হয় না। শেষ পর্যন্ত একজন পাত্রী পছন্দ হলো। মেয়ের বাবা নাই, মা অন্য কোথাও বিয়ে হয়েছে। মেয়ে তার চাচার কাছে বড় হয়েছে। লেখকের ভাই এই মেয়েকেই বিয়ে করবে কিন্তু ছেলের বাবার পছন্দ না। ছেলের এক কথা বিয়ে করলে সে এই মেয়েকেই বিয়ে করবে আর কাউকে সে বিয়ে করবে না। শেষ পর্যন্ত বিয়ে ঠিক হল। মেয়ের বাড়ি এক মফস্বল শহরে।তেত্রিশ জন বরযাত্রী নিয়ে ছেলে বিয়ে করতে গেলো। সবাই অনেক হৈ চৈ আনন্দ করতে করতে বিয়ে বাড়িতে আসলো। কিন্তু বিয়ে বাড়ি দেখে সবাই হতাশ একে কোন ভাবে বিয়ে বাড়ি বলা যায় না। শেষে জানা গেলো মেয়ের চাচাতো ভাই মারা গেছে।মেয়ের চাচা বলল যে ভাবে হক বিয়ে হবে, পরের দিন বিয়ে হবে ঠিক হল। রাতে বরযাত্রীদের গ্রামের সবাই এক দুই জন নিজেদের বাড়ি নিয়ে গেলো। লেখক একজনের সাথে গেলো, তার নাম সুধাকান্ত।বাড়িতে তিনি একা থাকেন।তার আর কেই নেই। রাতে তিনি এক ভৌতিক গল্প বলেন লেখককে। সেই গল্প আবার মিসির আলি তার এক ছাত্রের কাছে শোনেন। মিসির আলি এক দিন লেখকের সাথে দেখা করতে আসেন,তার কাছ থেকে গল্পটা শুনতে।মিসির আলি সেই গল্প শুনে তিনি আবার সুধাকান্ত বাবুর কাছে যান, এই ভৌতিক গল্পের রহস্য ভেদ করতে।
Thriller
1
ভালোবাসা! অনেকের কাছে দীর্ঘশ্বাস আবার অনেকের কাছে মধুর নিশ্বাস! অনেকের কাছে তিক্তময় আবার অনেকের কাছে মধুময়! অনেকের কাছে আবেগটাই সব আবার অনেকের কাছে বাস্তবতাই আসল! সবাই যে যার জায়গায় ঠিক। পার্থক্য শুধু সময়, ব্যক্তি বিশেষে! ভালোবাসা যেমন যার কাছে আসে তার কাছে সে তেমন! এতে কারো হাত নেই। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্যের নাম "ভালোবাসা"। এটা বিভিন্ন ভাবে, বিভিন্ন রঙ্গে রাঙ্গানো! কত মানুষ কত ভাবেই না প্রকাশ করে! ইমদাদুল হক মিলন এই "ভালোবাসার গল্প" নামক ব‌ইটিতে সেই রঙ্গ এবং প্রকাশ করার ভিন্ন ভিন্ন ধরন পাঠকের সামনে তুলে ধরার চেষ্টা করেছেন। মোট 12 টি গল্পে রাঙ্গানো হয়েছে এই ভালোবাসাময় ব‌ইটিকে। সাজানো হয়েছে অপূর্ব কিছু দৃশ্যের মাধ্যমে, যা পাঠককে আকর্ষন করবে স্বাভাবিক ভাবেই! প্রথমেই বিয়ের পরবর্তী জীবনে অধিকাংশ নারীর হারিয়ে যাওয়া প্রেমের গল্প। মদ খেয়ে বাসায় ফিরল জিতু। মেয়েটির খারাপ লাগলেও কখনো তার উপর অধিকার খাটাতে পারে না! বিয়ের কিছুদিন পর জিতু যখন জানতে পারল যে, এই অবলা নারী তার নয়! ঠিক তখন থেকেই জীবন নামক যুদ্ধে পরাজিত হওয়ার মতো আচরণ শুরু করল জিতু। কিন্তু মেয়েটি জিতুর নয় কেন? বিয়ের পর‌ও কেন তাকে দূরে রাখতে হচ্ছে? এক প্রেমিকের মদ খাওয়ার গল্প শুনালেন লেখক। প্রেমিকাকে একান্ত আপন করে পাওয়ার জন্য আশায় বুক বেঁধেও আর পাওয়া হলো না যুবকের!পরের গল্পতেই লেখক নিজেই বক্তা! কোনো এক অজানা মেয়ে ভক্তের সাথে দেখা হয়ে মহা বিপদে পড়লেন লেখক। গল্পটা বেশ চমৎকার। পরবর্তী গল্প মায়ার, মমতায় ঘেরা গল্প। বেড়াতে আসা সুহানের জন্য মায়া পরে গেল টুনটুনের! এটা কি ভালোবাসা নাকি মায়া? মায়াটাই কি ভালোবাসা? উত্তর দিবেন লেখক। এই বইয়ের স্বার্থক গল্প "জন্ম"। গল্পটি পড়ে অনেক সময় যাবত ভেবেছি আর চোখের পানি আপনা আপনিই পড়েছে গাল বেয়ে! কাজী নজরুল বলছে, "ভবনে ভবনে সেই সুর প্রতি কন্ঠ জড়ায়ে কহে- যাহারে খুঁজিয়া কাদি নিশিদিন, জানো সে কোথায় রহে?" বলা যায় না' গল্পে লেখক আচমকাই কিছু ঘটনা ঘটিয়েছেন। নির্লজ্জ চরিত্রের মাধ্যমেই গল্প সাজানো হয়েছে। "পাখিরা পিঞ্জরে" গল্পটি আত্মকথাই বলা চলে! রাতের অন্ধকারে, পুরো শহর যখন ঘুমে আচ্ছন্ন ঠিক তখন একটি ছেলের বারান্দায় পায়চারি করা আর আনমনেই অতীতের কিছু স্মৃতি আর বর্তমানের চিত্র ফুটে উঠেছে চোখের সামনে। 'পার্বতী' গল্প সাজাতে লেখক সময় নিয়েছেন একটু বেশিই, অন্য গল্পের তুলনায়। লঞ্চের ডেকে বসে নদীর সৌন্দর্য দেখার সাথে সাথে প্রিয় টুকির মুখ দেখা! টুকির কোমল কোলে ঘুমিয়ে পড়া! রজতরেখা নদীর পারে কাটিয়ে দেওয়া স্মৃতির পাতায় এলিয়ে পরা এক যুবক! নিজের ফুফু সমেত একটি মেয়ে টুকি। নির্জনে দেবদাসের পার্বতী হয়ে থাকার টুকির বদ্ধ পরিকরের দৃশ্য চোখের সামনে ভেসে উঠলেই চোখ ছলছল করে উঠে! দীঘিরপারে কাটানোর অপূর্ব শৈশবের স্মৃতি মনে পরা আর উপভোগ করা গ্রাম্য সৌন্দর্য! এখানেও মায়া, মমতা!"তুমি চলে গেলে, বুকে রয়ে গেল তব অঙ্গের ছাপ, শূন্য বক্ষে শূন্যে ঘুরি গো, চাদ ন‌ই অভিশাপ" অন্যরকম ভালো লেগেছে এই ভালোবাসাময় ব‌ইটি পড়ে! লেখকের নিকট ভালোবাসা মানেই মায়া, মমতা, স্মৃতিচারণ! এই বইটি পড়ার পর এটাই আমার বক্তব্য। কিছু কিছু গল্প লেখক নিজের অজান্তেই লিখেছেন বলে মনে হয়েছে। বারবার ফিরে আসার স্মৃতির মাঝে একঘেয়েমি কাটানোর জন্য লেখক কিছু স্বার্থক গল্পের দৃশ্য পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন। এটাই সবচেয়ে বেশি ভাল লেগেছে। কখনো মনের দুঃখে মদ খাওয়া আবার কখনো আনন্দে কেঁদে ফেলা! কখনো টুকুর পার্বতী হ‌ওয়ার গল্প আবার কখনো নদীর পারে জলের কলকলানি শুনার দৃশ্য! সব মিলিয়ে অসাধারণ একটি ব‌ই পড়ে শেষ করলাম। কাজী নজরুল ইসলামের লেখা এই পঙতিতে লেখকের পুরো ব‌ই। "মনে করো, দুঃস্বপ্নের মত আমি এসেছিনু রাতে বহুবার গেছ ভুলিয়া এবার‌ও ভুলিয়া যাইও প্রাতে" কোনো দ্বিধা না করে ব‌ইটি পড়তে পারেন। ভালো লাগার নিশ্চয়তা দিতে পারি। কিছু কিছু দৃশ্যের মাঝে নিজেকেও খুজে পাবেন আপনি। পড়ার পর হয়তো আমার মত আপনিও প্রশংসায় পঞ্চমুখ হতে পারেন। আজ‌ই অর্ডার করতে পারেন রকমারিতে! এখন শুধুই ব‌ইয়ের পাতায় ভালোবাসার মিষ্টি গন্ধ নাকে আসার অপেক্ষায়.....!
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা ★ রাইফেল রোটি আওরাত ★আনোয়ার পাশা ★উপন্যাস ★২৫০ টাকা কথাশিল্পী ও অধ্যাপক আনোয়ার পাশার 'রাইফেল রোটি আওরাত' উপন্যাসটি মুক্তিযু্দ্ধ ভিত্তিক পূর্ণাঙ্গ ও প্রথম উপন্যাস। উপন্যাসটির রচনাকাল ১৯৭১ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত। এই তিন মাসে রচিত হলেও পুরো উপন্যাসে একটি বৃহৎ পরিসর নিয়ে আটকানো হয়েছে। উপন্যাসে চিত্রিত হয়েছে , বাঙালি অস্তিত্বের কথা, ইতিহাসের কথা, বাঙালি সংস্কৃতির কথা, অসাম্প্রদায়িকতা, ধর্মীয় ও নৈতিক মূল্যবোধ, জীবনাচার, পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী দ্বারা ২৫ মার্চের হত্যাকান্ড, লুটপাট, পৈশাচিকতা, আগুনে পুড়ানো দেশ, নারী নির্যাতন এবং ধর্ষণ, মুক্তিযুদ্ধের প্রেক্ষাপট, স্বাধীনতার পক্ষে বিপক্ষে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা , বাঙালির অস্রধারন, স্বাধীনতার স্বপ্ন, এদেশীয় দালাল ও জামায়েত ইসলামীর ভূমিকা সব কিছু। একই মলাটে আবদ্ধ হয়েছে, অনেক গুলো ঘটনার। তবে ঘটনার পর্বে পর্বে চিত্রিত চিত্র এবং চরিত্র গুলো একাকার হয়ে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের সময় গুলোকে স্মরণ করিয়ে দেয়। সুদীপ্ত শাহিন থেকে শুরু করে মি.মালেক, ডা.খালেক, হাসিম শেখ, বীরঙ্গনা পলি, বীরঙ্গনা রোশেনা, রাজনৈতিক নেতা ফিরোজ, জামাল সাহেব, চিত্রশিল্পী আব্দুল্লাহ মনসুর আমন, সাংবাদিক নাজিম উদ্দিন হোসেন, কমিউনিস্ট কর্মী বুলা, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমান, কবি শামসুর রহমান, বিজন বিহারী, মোনায়েম খান, আইয়ুব খান, টিক্কা খান, দেশীয় বাঙালী আবাঙালী দালাল, দেশপ্রেমিক, বুদ্ধিজীবী, পাকিস্থান সৈনিক সকলেই উপন্যাসের ঘটনার পর্বে বিকশিত চরিত্র। উপন্যাসটিকে লেখক ওই সময়ের দলিল হিসেবে গড়ে তুলেছেন। এটি মুক্তিযুদ্ধের প্রথম উপন্যাস হিসেবে পরিচিত। এটা একাত্তোরের যৌবন বহন করে চলছে। উপন্যাসের নায়ক সুদীপ্ত শাহিন বাংলাদেশের আর বাঙালীর স্বপ্ন বাস্তবায়নেরই প্রতীক। একাত্তোরের মার্চ মাসের যে ভয়াবহ দিন গুলোর বর্ণনা, লেখক একেবারে তরতাজা কাহিনীগুলো লিপিবদ্ধ করেছেন শুধু। এপ্রিলের প্রথম দিকের অন্ধকার সময়টাকে লেখক যেভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তা বলার অপেক্ষা রাখে না। শুধু মাত্র মার্চের শেষ দিক আর এপ্রিলের প্রথম ভাগই এই উপন্যাসের পটভূমি। কিন্তু এই কয়েকদিনের পটভূমিই বৃহৎ এবং ভয়ংকর ভাবেই চোখে পড়ে। রাইফেল, রোটি, আওরাত এই তিন শব্দে লেখক দেখিয়েছেন অনেক কিছু। এই তিনটাই ছিলো পাকিস্তানি সৈন্যের মূল লক্ষ। রুটি খেয়ে গায়ের জোর বাড়াও, রাইফেল দিয়ে বাঙালী উৎখাত করো, এর আওরত(নারী) নিয়ে ফুর্তি করো। আর এই তিন লক্ষ পুরণের মধ্য দিয়ে হয়েনারা এগিয়ে যাচ্ছিলো। দেশের উপর যে অমানুষিক নির্যাতন আর বর্বরতাময় ধ্বংসযজ্ঞ চলছিলো, তার একটা নিপাট চিত্র, আনোয়ার পাশার বাস্তব চিন্তাভাবনার দ্বারায় প্রতিফলিত করেছিলেন উপন্যাসে। উপন্যাসের জমিন পরিপূর্ণ করে দিয়েছিলো সেই কালো সময়ের বর্ণনায়। আনোয়ার পাশা বাঙালির দুঃখ-বেদনা, আশার যে শিল্পরূপ নির্মাণ করেছেন রাইফেল রোটি আওরত উপন্যাসে, তা কালের সীমা পেরিয়েও বাংলা সাহিত্যে উজ্জ্বল হয়ে থাকবে। সেসময়ের রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের মধ্যে বসে লেখা আমাদের সমগ্র ইতিহাসে একটি মাত্র উপন্যাসই পাওয়া যায়-এ উপন্যাসই হচ্ছে “রাইফেল রোটি আওরাত"। ১৯৭১ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাস রচনাকাল । লেখক শহীদ আনোয়ার পাশা নিহত হলেন ১৯৭১ সালেরই ১৪ই ডিসেম্বর। স্বাধীনতা লাভের মাত্র দু'দিন আগে তিনি যে অমর কাহিনী উপন্যাসে বিধৃত করেছেন নিজেই হয়ে গেলেন তারই অঙ্গ চিরকালের জন্য। আনোয়ার পাশার উপন্যাসটি একদিক দিয়ে যুদ্ধক্ষেত্রে বসে একজনের প্রতিটি মুহুর্তের কাহিনী। আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের মধ্যে সৃষ্ট এ শিল্পকর্ম কতটা সত্যনিষ্ঠা লেখকের জীবনের পরিণতিই তার মহান সাক্ষ্য হয়ে থাকবে। আনোয়ার পাশার উপন্যাস, তাঁর শেষ উচ্চারণঃ “নতুন মানুষ, নতুন পরিচয় এবং নতুন একটি প্রভা। সে আর কতো দূরে। বেশি দূর হতে পারে না। মাত্র এই রাতটুকু তো। মা ভৈঃ। কেটে যাবে।” তাঁর এবং আমাদের সকলের কামনা ও প্রত্যাশারই অভিব্যক্তি। শিল্পী তাঁর জীবনকে আমাদের জীবনের মধ্যে পরিব্যাপ্ত।
War
5
ক্রাচের কর্নেল সম্প্রতি পড়া শেষ হলো। শাহাদুজ্জামানের লেখার সাথে আমার প্রথম পরিচয় এই বইয়ের মাধ্যমেই। পড়া শুরু করেই কাহিনীর ভেতর ঢুকে যেতে বাধ্য হয়েছি। একাকার হয়েছি গল্পের চরিত্রের সাথে, কাহিনীর সাথে আর চিন্তা-চেতনার সাথে। মুক্তিযুদ্ধের পূর্বের আর পরের সময়টুকু বর্ণনা হয়েছে নিখুতভাবে। জানতে পেরেছি কর্নের তাহেরকে। তাঁর চিন্তা-চেতনা আর উপলব্ধিকে। ক্রাচের কর্নের না পড়লে মুক্তিযুদ্ধকে জানা অস্পূর্ণ থেকে যাবে বলেই আমার মনে হয়।
War
5
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #ডিসেম্বরঃ (১৩) বইঃ দারুচিনি দ্বীপ লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃ অনুপম প্রকাশনী প্রথম প্রকাশঃ ফেব্রুয়ারি, ১৯৯১ প্রচ্ছদঃ সুখেন দাস পৃষ্ঠাঃ ৯৬ রকমারি মূল্যঃ ১১৩টাকা . শুভ্র হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট একটি অসাধারণ জনপ্রিয় চরিত্র।শুভ্র শুদ্ধতম মানুষ।কিন্তু বেচারার চোখ খুব খারাপ,চোখ থেকে চশমা খুলে ফেললে সে প্রায় অন্ধ।দেখতে পাইনা।ফলে তার ক্লাসের বন্ধুরা তাকে কানাবাবা নামে ডাকে।দারুচিনির দ্বীপ বইটি হুমায়ূন আহমেদ এর শুভ্র সিরিজেরই বই।একদল ছেলেমেয় সেন্ট মার্টিনে যাবার পরিকল্পনা করে এবং তারা সেন্ট মার্টিনের নাম দেয় "দারুচিনি দ্বীপ"।পুরো উপন্যাসটি যেহেতু দারুচিনি দ্বীপে যাওয়ার পরিকল্পনা নিয়েই এগিয়েছে এবং দারুচিনির দ্বীপই ছিল তাদের সবকিছুর মূল কেন্দ্রবিন্দু তাই উপন্যাসের নাম দারুচিনি দ্বীপ যথোপযুক্ত। . রিভিউঃ উপন্যাসে শুভ্র ও তার বন্ধু-বান্ধবীরা প্রবাল দ্বীপ সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার আয়োজন করে।এই নিয়ে তাদের মধ্য অনেক পরিকল্পনা ও উৎসাহ দেখা যায়।একের পর এক বিভিন্ন মিটিংয়ের মাধ্যমে চলে পরিকল্পনার কাজ।প্রবল উৎসাহে তারা সেন্ট মার্টিনের নাম রাখে দারুচিনি দ্বীপ।তারা কল্পনা করতে থাকে ছোট্ট প্রবাল দ্বীপে চারপাশে সমুদ্র নিয়ে ভরা জোছনায় রাত কাটাবে।কিন্তু তাদের মধ্য নানান সমস্যা দেখা দেয়।প্রথমত সেন্ট মার্টিন যাওয়ার পরিকল্পনাটা ছিল ছেলেদের।মেয়েরা চেপে ধরে তারাও যাবে।তাদের বাদ দিয়ে কোন পরিকল্পনা করা যাবেনা।ছেলেরা মেয়েেদর নিতে ঘোর আপত্তি জানায়।তাদের মতে মেয়েরা সাথে গেলে নানান ঝামেলা। তারপর একে একে আরো অনেক সমস্যা বেড়িয়ে আসে।তার মূল কারণ তারা সবাই একই ক্লাসের ও বন্ধু হলেও সবাই আলাদা আলাদা সামাজিক পরিমণ্ডল থেকে এসেছে।তাদের একেকজনের পারিবারিক,সামাজিক অবস্থা একেক রকম।যেমনঃ শুভ্র ধনীর দুলাল।মা বাবার একমাত্র ছেলে।তার বাবা চাইনা সে তার মধ্যবিত্ত বন্ধুদের সাথে একা ঘুরতে যাক।অনুশকাদেরও প্রচুর টাকা।অন্যদিকে সনজুর বাবা সামন্য কেরানি।পিকনিকের টাকা দেওয়ার সামর্থ্য নেই।বল্টু টিউশনির টাকা দিয়ে চলে।টাকা না পেলে হয়তো তারও যাওয়া হবেনা।আর জরী চাচার বাড়িতে আশ্রিতা।বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়ার কথা বলার সাহস নেই তার। তাহলে কি তাদের সেন্ট মার্টিনে ঘুরতে যাওয়া আটকে যাবে?তাদের দারুচিনি দ্বীপের স্বপ্ন কি স্বপ্নই থেকে যাবে? মূলত পুরো উপন্যাসই শুভ্র ও তার বন্ধুদের সেন্ট মার্টিনে যাওয়ার বিভিন্ন পরিকল্পনা,তাদের পরিবার,সামাজিক ও পারিপার্শ্বিক অবস্থা নিয়ে এগিয়েছে। . পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ হুমায়ূন আহমেদের সৃষ্ট চরিত্রগুলো হিমুকে বেশি ভালো লাগলেও,শুভ্রকেও অনেক ভালো লাগে।দারুচিনি দ্বীপ উপন্যাসে হুমায়ূন আহমেদ শুভ্র ও তার বন্ধুদের আলাদা আলাদা পারিবারিক অবস্থানের মাধ্যমে সমাজের নানান সমস্যার বিষয়গুলো তুলে ধরেছেন।সমাজের উচ্চবিত্ত,নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত পরিবারগুলো সামাজিক ও পারিবারিক অবস্থা,বিভিন্ন সমস্যাগুলো তুলে ধরেছেন।একদল ছেলেমেয়ে যাদের পরিবার সামাজিক অবস্থানের দিক দিয়ে আলাদা হওয়া সত্ত্বেও,তাদের মধ্য যে সুসম্পর্ক গড়ে উঠেছে,যে বন্ধুত্ব গড়ে উঠেছে তা সত্যি অসাধারণ।তার উপর হুমায়ূন আহমেদ এর অসাধারণ লেখার জাদু তো ছিলই।আমার কাছে বেশ ভালো লেগেছে উপন্যাসটি। রেটিং:- ৪/৫
Fiction
0
কিশোর তীয় এবং সর্বশেষ বই। এর আগে আরো দুটি বই আছে। উপন্যাস আর গোয়েন্দা কাহিনীর সংমিশ্রণে এই টুনটুনি সিরিজ। টুনটুনি সিরিজের এটি তৃ ১. টুনটুনি ও ছোটাচ্চু ২. আরো টুনটুনি ও আরো ছোটাচ্চু ৩. আবারো টুনটুনি ও আবারো ছোটাচ্চু। প্রথম বই দুইটা যাদের পড়া তাদের কাছে টুনটুনির নতুন করে পরিচয় দেয়ার কিছু নেই। তবুও যাদের এই সিরিজ এখনো পড়া হয়নি তাদের জন্য বলছি, টুনটুনি একটা বাচ্চা মেয়ে। খুব বুদ্ধিমতী। আর টুনটুনির ছোট চাচা মানে ছোটাচ্চু শাহরিয়ারের একটা ব্যক্তিগত গোয়েন্দা টিম আছে। সেখানে চাচ্চুর সহকারী হিসেবে সে কাজ করে। টুনটুনি ভীষণ বুদ্ধিমতী হওয়ার কারণে চাচ্চুর কেসের অর্ধেক সেই সলভ করে দেয়। তিনটি বইয়েই আছে সেই গল্পগুলো। খুব ছোট ছোট কাহিনী কিন্তু দারুণ মজার। এই বইতেও আছে তেমনই পাচঁটি গল্প। ★ একজন দুধর্ষ পেপার চোর ★ গো-গো গোল্ডেন ফাইভ ★ লুডো টুর্নামেন্ট ★ হ্যাকার ★ বইমেলা এই পাচঁটি গল্প দিয়েই সাজানো বইটি। খুব সাধারণ কিছু গল্প। কিন্তু এই গল্পগুলো দিয়েই লেখক গুরুত্বপূর্ণ কিছু বার্তা দিতে চান কিশোরদের মাঝে। সেই গল্পগুলো সম্পর্কে জানতে হলে নিয়ে বসতে হবে সুন্দর এই বইটি!
Childrens-Book
2
বুক রিভিউঃ ‘চন্দ্রমুখী' (আশীফ এন্তাজ রবি) এই বইয়ের বর্ণনা দেবার জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে শব্দ আমার শব্দভান্ডারে রয়েছে কি না তা নিয়ে আমি যথেষ্ট চিন্তিত। শুধু চিন্তিতই নয় আমি রীতিমতো ভয়ে রয়েছি। আমার ভয়টা মূলত আমার রিভিউ পড়ে এতো অসাধারণ বইটি সম্পর্কে যদি কেউ মনে ভুল ধারণা গেঁথে নেয় সে নিয়েই। তাই দয়া করে একবার হলেও বইটি পড়ে নিয়ে তারপর বিচার করবেন। কাগজের নৌকা উপন্যাসটির পর চন্দ্রমুখী উপন্যাসটি বের করতে লেখক সময় নিয়েছেন চার বছর। তাই কৌতুহলবশত এবারের বইমেলার প্রথম বইটি আমি ‘চন্দ্রমুখী' দিয়েই শুরু করেছি। উপন্যাসটির আকৃতি কেবল ৮৮ পৃষ্ঠা। দেখেই মন খারাপ হয়ে যাওয়ার মতো কথা। তার উপর এক পৃষ্ঠায় লাইনের সংখ্যাও আহামরি বেশি নয়। বলতে গেলে এক রাশ হতাশা নিয়েই বইটি পড়া শুরু করেছিলাম। কিন্তু উপন্যাসটি পড়ে সত্যিই আমার সমস্ত হতাশা উবে গিয়ে চোখ থেকে বেয়ে আসা সুখের জলে পরিনত হয়েছে। সত্যিই, দীর্ঘদিন পর একটি সুন্দর উপন্যাস পড়বার সুখ পেলাম। চন্দ্রমুখী উপন্যাসের মূল চরিত্র ফরিদ। ফরিদ বেশ সাদামাটা চরিত্র ,তবে ইন্টারেস্টিং। উপন্যাসের আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলো মুনা। যে কি না ফরিদের প্রেমে একেবারে হাবুডুবু। গল্প বেশ সাদামাটা ভাবেই এগোচ্ছিল। বই যতোই পড়ছি ততোই মনে হচ্ছিল এতো ছোট উপন্যাসে বুঝি তৃপ্তি পাবো না। দেখতে দেখতে অর্ধেক উপন্যাস শেষ । উপন্যাসের মূল গল্প শুরু হয় ৪৬ পৃষ্ঠার পর থেকে। গুলশানে এক ভয়াবহ ঘটনা ঘটে। আর এরপর থেকেই প্রতি মুহূর্তেই আপনার মনে এক ধরণের উৎকণ্ঠা সৃষ্টি হবে। মনে হবে উপন্যাসটা আরেকটু ছোট হলেই পারতো। তাহলে অন্তত এতোটা উত্তেজনার মধ্য দিয়ে যেতে হতো না। উপন্যাসের আরেকটি ইন্টারেস্টিং চরিত্র হচ্ছে ‘ইমন’। লেখক যে কতোটা অসাধারণ করে এই চরিত্র ফুটিয়ে তুলেছেন তা সত্যিই অবাক করা ব্যাপার। উপন্যাসটির ফিনিশিং ছিল সবথেকে বেশি আকর্ষণীয়। গল্পের সমাপ্তি যে কোন ঘটনা দিয়ে শেষ হতে চলেছে তা বুঝতে আপনার শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়তে হবে। আর বিশ্বাস করুন গল্পের সমাপ্তি আপনাকে মুগ্ধ করতে করতে ক্লান্ত করে দেবে। এই উপন্যাসের ব্যাপারে লেখক আশীফ এন্তাজ রবি একটি কথা বলেছিলেন ‘চন্দ্রমুখী উপন্যাসে একটা লাইন আছে: বাংলাদেশ হচ্ছে অর্ধেক ইতিহাসের দেশ। ইতিহাসের যে অংশটা অপ্রয়োজনীয়, সেটা খুব গুরুত্ব দিয়ে লেখা হয়। বাদ পড়ে যায় আসল অংশ। আমি সেই আসল অংশ বলার চেষ্টা করেছি'। এক কথায় অসাধারণ একটি বই। আমার পড়া সেরাদের তালিকায় থাকবে বইটি। যদি নম্বর দিতে হয় আমি ১০/১০ দিব উপন্যাসটিকে। আমি একটা দশমিক নাম্বারও বাড়িয়ে দিচ্ছি না। পড়লেই বুঝতে পারবেন এই বইটির আবেদন কতখানি। আশা করছি বইটি কিনতে কেউ কার্পণ্যতা করবেন না।
Fiction
0
বইঃ নিতু আর তার বন্ধুরা লেখকঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ধরণঃ : শিশু-কিশোর উপন্যাস প্রকাশনীঃ অনুপম প্রকাশনী নিতু দশ বছরের একটি মেয়ে যার মা মারা যাবার আট দিনের মাথায় বাবা নতুন মা নিয়ে আসেন । এবং এক মাস যেতে না যেতেই নিতুকে পাঠানো হয় "বুতুরুন্নেসা বালিকা বিদ্যালয়ে" যেটা এক আবাসিক বিদ্যালয় , যেখানে শৃঙ্খলার নামে ছোট ছোট নিষ্পাপ মেয়েদের উপর চালানো হয় ভয়ানক রকমের অত্যাচার । নিতু এসেই বিপদে পরে যায় , তবে পাঁচটি ভাল বন্ধু পেয়ে যায় , তাদের সাথে নিয়েই ঘটতে থাকে একের পর একে মজার কান্ড । উপন্যাসের অন্যতম খল চরিত্রের নাম "খোরাসানী ম্যাডাম" প্রচন্ড রকমের মোটা আর ভয়ানক রকমের দজ্জাল এক মহিলা , যে কিনা এই স্কুলের প্রিন্সিপাল । হোস্টেলে থাকতে থাকতে বাচ্চা মেয়েগুলো ভুলে যায় তাদের কেউ ভালবাসতে পারে , তারা যে ফুটফুটে নিষ্পাপ শিশু । গল্পের আরেক মজার চরিত্রের নাম "কাশেম" যে একটি মেয়ে তবে তার মা ছেলে হয়েছে ভেবে এই নাম রেখে দেয় । উপন্যাসের মাইনাস পয়েন্ট হল কিছু স্থানে মনে হয়েছে যে জোর করে হাসানোর চেষ্টা করা হয়েছে । উপন্যাসে আরেকটি ব্যপার খুবই চমৎকার লেগেছে তা হল এখানে লেখক দেখিয়েছেন মেয়েরাও চাইলেই অনেক কিছুই করতে পারে । চাইলেই তারা পারে নিজেদের বিপদ থেকে উদ্ধার করতে । উপন্যাসের প্রায় প্রতিটি চরিত্ররিও চমকপ্রদ । বিভিন্ন প্রাণীদের সাথে নিতুর বন্ধুত্ব আর ভালবাসাও ছিল অন্যরকম । জাফর ইকবালের স্যারের কোন সায়েন্স ফিকশন না পড়লেও কিশোর উপন্যাস প্রায় সব পড়া , যোগ হল এই উপন্যাস টি । আর তার উপন্যাসের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হল অধিকাংশ উপন্যাসি শহরের বাহিরে মফস্বলের কিশোর-কিশোরীদের নিয়ে লিখা হয় । আমার কেন জানি মফস্বলের প্রেক্ষিতে গড়ে ওঠা গল্প গুলোই দারুন লাগে । যেমন "দুষ্টু ছেলের দল , হাত কাটা রবিন , দিপু নাম্বার টু , রাজু ও আগুনালির ভূত । " পরিশেষে বলতে চাই এই উপন্যাসে তেমন কোন পুরুষ চরিত্র নেই তবুও পড়তে খারাপ লাগবেনা । আমি বই খুবই ধীর গতিতে পরি , তারপরেও এই বইটি পড়তে সময় লেগেছে মাত্র দুই দিন । বইয়ের রকমারি লিঙ্কঃ https://www.rokomari.com/book/7681/নিতু-আর-তার-বন্ধুরা
Childrens-Book
2
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা br বইয়ের নামঃ অনীশbr লেখকঃহুমায়ূন আহমেদ br প্রচ্ছদঃসমর মজুমদারbr ধরনঃসমকালীন উপন্যাসbr প্রকাশনীঃঅনুপম প্রকাশনী br মূল্যঃ৭৫ টাকাbr br .br মিসির আলি সিরিজের একটি বই অন্যান্য বইয়ের তুলনায় এই বইটির পরিসর অনেক ছোট। উপন্যাস এর শুরু হয় হাসপাতাল থেকে।মিসির আলি হাসপাতাল এ ভর্তি হয়েছেন।তার রোগটা ডাক্তাররা ঠিক ভাবে ধরতে পারছেন না।ডাক্তাররা ধারনা করেছেন যে মিসির আলির লিভার নষ্ট হয়ে গেছে।এই হাসপাতালেই অপারেশন করাতে ভর্তি হন হালের জনপ্রিয় নায়িকা
Fiction
0
কিশোর লিটুর আত্মকথা স্যার মোহাম্মদ জাফর ইকবাল,কিশোর উপন্যাসগুলো যিনি আসম্ভব সুন্দর করে লিখেন তারই “লিটু বৃত্তান্ত” একটি আ্সাধারন রচনা।এই বইটি পড়ে নিজের কিশোর লাইফটাকে অনেক মিস করতেছি।বইটির মূল কাহিনীতে গেলে বলা হয়েছে একটিকিশোরের কথা নাম লিটু।তার অনেক মন খারাপ কারন সে সাফকাত কে নিয়ে একটা লাইব্রেরি করেছে,জাহিদের সাথে যৌথভাবে একটা ল্যাবরেটরি,আর কাজল,মতিন, সজীবকে নিয়ে একটি ক্রিকেট ক্লাব বানানোর পরও তাকে এখান থেকে চলে যেতে হবে কারণ তার বাবা ডক্টর আবুল কালাম প্রোমোশন পেয়ে প্রফেসর হয়েছে। সেই সাথে বদলি হয়েছে এইচ.কিউ.গভমেন্ট কলেজের প্রিন্সিপাল হয়ে। লিটুদের নতুন বাড়িটা হাওড় এলাকায় একটা টিলার উপর। সেখান থেকে যতদূর দেখা যায় শুধু গাছ আর গাছ। ইট কাঠের শহর ছেড়ে একেবারে প্রকৃতির মাঝে। নতুন জায়গায় প্রথম দিনে লিটুর সাথে একটি ছেলের পরিচয় হয়। সে বিভিন্ন গাছের ও পশুপাখির নাম তার নিজের মত করে রাখে। লিটু ভাবে স্কুলে হয়তো তার ভাল লাগবে না কিন্তু ক্লাসে ঢুকেই তার সেই আগের পরিচিত ছেলেটির সাথে দেখা হল। তার নাম হচ্ছে রতন। রতন লিটুকে ক্লাসের সবার সাথে পরিচয় করিয়ে দিতে লাগলো। তার পরিচয় করিয়ে দেয়ার ধরনটা একটু আলাদা। সে সবার সম্বন্ধে একটু বাড়িয়ে বাড়িয়ে বলে। লিটুর জীবনে অনেকটা আশীর্বাদের মত আসে রিয়াজ মামা। রিয়াজ মামা আমেরিকা থেকে তাদের ওখানে বেড়ানোর জন্য এসেছিল। মাত্র দশ দিনে লিটু আর লিটুর ছোট ভাই রাজুর সাথে তার অনেক ভাব হয়েছিল। রিয়াজ মামা লিটুকে সাঁতার , বিজ্ঞান সম্বদ্ধে ধারনা ছাড়াও আরও অনেক কিছু শিখিয়েছেন। রিয়াজ মামা চলে যাওয়াতে লিটুর খুব মন খারাপ হল।অঙ্কের শিক্ষক রাক্ষস আলী নামে পরিচিত আক্কাস আলি স্যার অনেক পাজির পাজি। এমন একজন শিক্ষকের হাত থেকে বাঁচার জন্য তারা একটা প্লান করলো। প্লানের বাস্তবায়ন ঘটাতে তারা অনেক মজার মাজার কাণ্ড ঘটাতে থাকে।আমাদের দেশে অনেকে জ্বীন ভুত বিশ্বাস করে। বিজ্ঞান মতে যা অসম্ভব। এই বিষয়টা এখানে একটি ঘটনার মাধ্যমে ফুটে উঠেছে। লিটুদের এলাকায় একটা লোক জ্বীন দেখানোর নাম করে মানুষ ঠকায়। রতন সেই লোকটিকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। লোকটি অনেকদিন থেকেই মানুষ ঠকিয়ে আসছিল। এরপর একদিন দেশে বন্যা হয়। লিটু, তানিয়া, রতন, সুমন রা রিলিফের কাজ শুরু করে। তারা ছোট বলে তাদের কাজ হয় স্যালাইন তৈরি করে। একদিন তাদেরকেও রিলিফ দিতে নিয়ে যাওয়া হয়। অসহায় মানুষগুলোর পাশে দাড়াতে পেরে তারা অনেক খুশি। তারা যে ট্রলারে গিয়েছিল সেটার মাঝি একজন মুক্তিযোদ্ধা। তারা তার কাছ থেকে মুক্তিযুদ্ধের অনেক গল্প শোনে। ফেরার পথে তারা ডাকাতের হাতে পরে। বদি ডাকাতের সেই অঞ্চলে অনেক নামডাক। লিটু ও তার বন্ধুরা তাদের বুদ্ধিমত্তা দিয়ে ডাকাতের হাত থেকে উদ্ধার পায়।এই কিশোর উপন্যাসটিতে স্যার জাফর ইকবাল মানুষের বাস্তব জীবনের কথাগুলো অনেক সুন্দর ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন।বইটি পড়ে অনেক মজা লেগেছে।তাই পাঠকদের বলব এত মজার একটি বই পড়তে মিস করবেন না।
Childrens-Book
2
সৌরজগত থেকে দুই আলোকবর্ষ দূরের গোলাপী আর লালচে রংয়ের সমন্বয়ে গঠিত তারকাজগত হল নেমেসিস। যা ধেয়ে আসছে স্যরজগতের দিকে। নেমেসিস আঘাত হানলে ধ্বংস হয়ে যাবে আমাদের পৃথিবী! অদ্ভূত রহস্যময়ী তরুনী মারলিনকে নির্বাসন দেওয়া হয়েছে ইরিথ্রো গ্রহতে। যেখানে আছে অদ্ভূত রোগ ইরিথ্রোপ্লেগ! এই রোগের কারণে ইরিথ্রো গ্রহতে গেলেই বিকলঙ্গ হয়ে মৃতু্যবরন করতে হয়। তাহলে সেখানে মারলিন কিভাবে টিকে থাকবে? এরকমই রোমঞ্চকর সায়েন্স ফিকশন থৃলার বই আইজ্যাক আসিমভের নেমেসিস। অনুবাদ করেছেন পান্থ বিহোস। তার সাবলিল অনুবাদের কারণে ৪৩০ পৃষ্ঠার বইটি ৩ রাতেই শেষ করতে পেরেছি। থৃলার সায়েন্স ফিকশন পছন্দ করলে বই পড়ে দেখতে পারেন। আশা করছি আমার মত অনেকেরই ভালো লাগবে...
Science-Fiction
4
বইঃ নেমেসিস লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ধরণঃ থ্রিলার প্রকাশনীঃ বাতিঘর পৃষ্ঠাঃ ২৭২ মূল্যঃ ২০০ টাকা প্রিভিউঃ জনপ্রিয় লেখক পক্ষাঘাতগ্রস্থ অবস্থায় নিজের ফ্ল্যাটে খুন হলেন। সন্দেহের তীর গিয়ে পড়লো তার যুবতী স্ত্রী আর প্রেমিকের ওপর। বেরিয়ে এলো নানান কাহিনী। একে একে চলে গেলো অনেকের নাম। হোমিসাইড ইনভেস্টিগেটর জেফরি বেগ শুরুতে সফলতা পেলেও এক পর্যায়ে ঘটোনার কুলকিণারা করতে গিয়ে হিমশিম খায়। পর্দার আড়াল থেকে একটি শক্তিশালী চক্র সক্রিয় হয়ে ওঠে তদন্তে বাধা দেবার জন্যে। শেষ পর্যন্ত জেফরি বেগ যা জানতে পারে তা একেবারেই অপ্রত্যাশিত। কী সেই ঘটনা জানতে হলে পড়ুন নেমেসিস। পাঠকমহলে আলোড়ন সৃষ্টিকারী মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন-এর নেমেসিস বাংলা সাহিত্যে মৌলিক থৃলারের সূচনা করেছে। ---------------------------------------------------------------- নিজস্ব মতামতঃ বইটি নানা কারণেই বিতর্কিত, সমালোচিত। “নেমেসিস”র কাহিনীতে যে লেখকের কথা বলা হয়েছে, তাঁর সাথে বাংলাদেশের জনপ্রিয় লেখকের ব্যক্তিগত জীবনের অপ্রত্যাশিত মিল লক্ষ্য করা গেছে। ঝেড়েই কাশি বরং, এই থ্রিলারের পক্ষাঘাতগ্রস্থ লেখকের বর্ণনার সাথে আমাদের প্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের ব্যক্তিগত জীবনের নানা আলোচিত ঘটনার প্রায় হুবহু মিল। এটা নিছকই কাকতাল না উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, তা জানিনা। তবে, এ বিষয়টা খারাপ লেগেছে। প্রত্যেক লেখকেরই বাকি লেখকদের প্রতি ন্যূনতম শ্রদ্ধাবোধ থাকা উচিত। সে বিষয়টির অভাব দেখলাম এখানে। বাদবাকি ঘটনা, কাহিনীর ধারাবাহিকতা, টানটান সাসপেন্স... সবকিছুই ঠিকঠাকভাবে উপস্থিত ছিলো নেমেসিসে। জেফরি বেগ- বাস্টার্ড সিরিজের প্রথম উপন্যাস, এককথায় দুর্দান্ত। লেখক যে থৃলার লেখায় বেশ সিদ্ধহস্ত, সেটি উপলব্ধি করা গেছে। পাঠক, এবার বইয়ের প্রিভিউ’র শেষ প্যারা টা খেয়াল করুন। বাংলা সাহিত্যে মৌলিক থৃলারের সূচনা মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন কীভাবে করলেন, আমার বোধগম্য হয়নি। এটা একেবারেই বানোয়াট, ভ্রষ্ট তথ্য। প্রিভিউ’র এই শেষ অংশ পড়ে তীব্র বিরক্তিবোধ করেছি। বইয়ের মুদ্রণ, প্রচ্ছদ সবই সুন্দর ছিলো। এগুলো নিয়ে অভিযোগের কোনো সুযোগ পেলাম না। সবমিলিয়ে, বইটি নিয়ে আমার মিশ্র অনুভূতি। কাহিনী ভালো লেগেছে, তবে বইয়ের যে অংশগুলোর কথা রিভিউতে বললাম, সেগুলোর কারণে আবার খারাপও লেগেছে। আমি আলোচিত, সমালোচিত সব ধরণের বই-ই পড়ি। যাদের এসব বিষয়ে গাত্রদাহ আছে, তারা নেমেসিস এড়িয়ে গেলেই মঙ্গল। আর যারা আমার মত বইয়ের ব্যাপারে সর্বভুক, তারা বইটি পড়ে দেখতে পারেন। Happy Reading :D রকমারি লিঙ্কঃ https://www.rokomari.com/book/33654/নেমেসিস
Thriller
1
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ পাক সার জমিন সাদ বাদ লেখকঃ হুমায়ূন আজাদ পৃষ্ঠাঃ১১২ প্রকাশনাঃ আগামী প্রকাশনী মলাট মূল্যঃ ১৫০/- কোন ভূমিকা পাচ্ছি না । এই বইটির রিভিউ লিখব ভেবে ভেবে দুদিন কাটিয়েছি । কোন লেখাই আসছিল না । একজন মানুষ জানে যে এই লেখার পর তিনি হয়ত পরে যাবে এক আস্ত আগ্নেয়গিরির মাঝে তবুও নিঃসংকোচ এ কলম চালিয়ে গেছেন । হয়ত তিনি নিজেও বুঝতে পেরেছেন তবুও থেমে যাননি । আসলে কাউকে না কাউকে তো এগিয়ে আসতেই হবে । শুরু টা না হয় আমি ই করি । ১৯৬০-এর দশকে বাঙলাদেশ ছিলো পাকিস্তানের উপনিবেশ। তখন একটি উর্দুগানে নিরন্তন ঝালাপাল হতো আমাদের কান, যার প্রথম পংক্তি ছিলো ‘পাক সার জমিন সাদ বাদ’। সামরিক শাসন আর উর্দু জাতীয় সঙ্গীতে বাঙলাদেশ ছিলো পীড়িত। ১৯৭১-এ মহান মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে আমরা সৃষ্টি করি একটি স্বাধীন দেশ: বাঙলাদেশ। কিন্তু প্রতিক্রিয়াশীল অন্ধকারের শক্তিরাশি আমাদের সামনের দিকে এগোতে দেয় নি, বরং নিয়ে চলছে মধ্যযুগের দিকে; বাঙলাদেশকে ক’রে তুলছে একটি অপপাকিস্তান। মৌলবাদ এখন দিকে দিকে হিংস্ররূপ নিয়ে দেখা দিচ্ছে; ত্রাসে ও সন্ত্রাসে দেশকে আতঙ্কিত ক’রে তুলছে। তারই এক ভয়াবহ ও শিল্পিত চিত্র রচিত্র হয়েছে হুমায়ুন আজাদের পাক সার জমিন সাদ বাদ উপন্যাসে। উপন্যাসটি প্রথম বেরোয় দৈনিক ইত্তেফাক -এর ঈদ সংখ্যা ২০০৩-এ। বেরোনোর পর প্রগতিশীলেরা একে অভিনন্দিত করেন, আর মৌলবাদীরা মেতে ওঠে এর বিরুদ্ধে আক্রমণে-উপন্যাসটি পরিবর্ধিত হয়েছে । অনেকের কাছেই হুমায়ুন আজাদ পছন্দের কোন লেখক না । কিন্তু আমার কাছে অন্যতম একজন । কারণ তার বই গুলোর যুক্তিখন্ডাতে আমার ভালো লাগে । এই বইটি বিশেষ এক গোষ্ঠী কে টার্গেট করে লেখা হয়েছে । অনেক এই বলেন ধর্ম কে অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয়েছে । কিন্তু আপনি নিজেই ভাবুন তিনি এটা কেন করেছেন? তিনি কিন্তু মানুষ গুলোর কথা বেশি এনেছেন ধর্মের চেয়ে । কারণ তারাই ব্রেন ওয়াশ এর সাথে যুক্ত । আপনি আমি ধর্ম সম্পর্কে কতটুকু জানি । বলতে গেলে কিছুই না । কিন্তু যারা জানে তারা যদি আমাদের ভুল বুঝায় তখন বিষয়টা তো আর ভালো না । আমার নিজের একটা থিওরি আছে "ধর্ম মানুষ কে অন্ধ হতে শেখায় না" তবে যারা আমাদের এই জ্ঞান দান করেন তারাই আমাদের অন্ধ করে রাখেন । বইয়ের লেখনী চমৎকার । তবে বইটি ২০+ হিসেবে আমি দেবে । কারণ এর নিচের বয়েসের কারো বোধগম্য হবে বলে মনে হয় না । বইয়ের ভাষা নির্বাচন এডাল্ট গল্পের মত । সুতরাং বইটি পড়ার সময় একটু আলাদা প্রস্তুতি নিয়ে বসতে হবে । যদিও কাহিনী বুঝতে সময় লাগবে তবে পড়া শেষ না করে উঠতে মন চাইবে না । সবশেষে বলব, জ্ঞান আর জানার জন্য সব ই পড়তে পারি । যত দিন বেচে আছি পড়ব ।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ মানব জনম লেখকঃ সাদাত হোসাইন প্রকাশনীঃ ভাষাচিত্র মূল্যঃ ৬৯৫ টাকা (রকমারি মূল্য-৫৯১ টাকা) মানুষের জীবনের নানাদিক এ বইটিতে তুলে ধরা হয়েছে। সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে মানব জীবনে কীভাবে উত্থান পতন ঘটে, তা তুলে ধরা হয়েছে। দেখানো হয়েছে, কীভাবে সময়ের সাথে সাথে ক্ষমতার পালাবদল ঘটে থাকে। এছাড়া সময়ের সাথে সাথে আধিপত্য বিস্তারের উত্থানপতনও উঠে এসেছে এ বইটিতে। এসব ব্যাপারগুলো গল্পাকারে অনেক বিশদভাবে বর্ণনার ক্ষেত্রে মুন্সিয়ানা দেখিয়েছেন এ তরুণ লেখক। এক কথায়, মানব জীবন সংক্রান্ত বিভিন্ন দর্শনগত সত্য এ বইয়ের পাতায় ঠাঁই করে নিয়েছে। তবে আমার কাছে মনে হয়েছে, এ কাজটি করতে গিয়ে উপন্যাসের গল্প অনর্থক দীর্ঘায়িত করা হয়েছে। এতটা দীর্ঘায়িত না করলেও চলত। এছাড়া পুরো উপন্যাস জুড়েই আঞ্চলিক ভাষার আধিক্য অত্যন্ত বেশি। তবে এখানেই এ লেখকের স্বকীয়তা বলে মনে হয়েছে। এটি অনেক পাঠকের জন্য (বিশেষত যারা দীর্ঘ গল্প পছন্দ করেন না) বিরক্তিকর হতে পারে। এটুকু বাদ দিলে সর্বোপরি ভালো লেগেছে বইটি। রকমারি লিংকঃ www.rokomari.com/book/127449/
Fiction
0
এই বইটা কিনবার সময় সময় কিভাবে কিভাবে যেন চোখ এড়িয়ে গিয়েছিল। ভাগ্যিস গিয়েছিল, ভুলেও যদি “হরর” শব্দটা দেখে ফেলতাম, কোনভাবেই কিনতাম না হয়ত। আর নিশ্চিতভাবেই মিস করতাম রুদ্ধশ্বাসে শেষ করা কাহিনীটা! -এটা কি “হরর” বই? আমি সিউর না। ব্যক্তিগতভাবে ভীষণ ভীতু, সযতনে ভুত-প্রেত সংক্রান্ত কাহিনী এড়িয়ে চলি। -তবে কি এটা লেখকের দাবী করা “হরর-থ্রিলার”? আলবৎ!!! অল্প কিছু থ্রিলার পড়ার অভিজ্ঞতা থেকে বলতে পারি, আর যাই হোক, এই বইয়ে থ্রিলের অভাব নাই!! গল্পের নায়ক একই সাথে অতীব ধনীর একমাত্র পুত্র এবং ইন্টারন্যাশনাল স্বর্ণজয়ী শ্যুটার। এক্সিডেন্টে বাবা মারা যাবার পর থেকে বিশাল সম্পত্তির ভার যার একার উপর চেপে বসেছে। প্রচুর মানসিক চাপ নিতে না পেরে যে মাঝেমধ্যেই এলকোহলের দিকে ঝুকে পড়ছে। তবে সে জিনিসের উপরও যার রয়েছে আর্শ্চয কন্ট্রোল। বিভিন্ন টাইমলাইনে ঘুরে ফিরে, ক্যারেক্টার বিল্ড-আপের ভেতর দিয়ে বইয়ের প্রথম পার্ট এসে থামে একটা শুটিং সিনে, যেখানে নায়কের গুলিতে এক মাস্তানের মৃত্যু হয়। খুনের দায় থেকে বাচতে নায়ক গা ঢাকা দিতে এসে পৌছায় রংপুরে। কাহিনীর রংপুর পার্ট পর্যন্ত যেতে পারাটাই এই বইয়ের কঠিন বিষয়। “টিপিক্যাল বাতিঘর প্রকাশনী” টাইপ কিছু বর্ণ্না/ ঘটনা/ লেখা/ জিনিস রয়েছে প্রথম পার্টে, যা অনেকাংশেই গল্পের গতি শ্লথ করে দিচ্ছিল। তবে মুখের স্বাদ বারাবার জন্যে মাঝে মধ্যে তিতা করল্লাও খেতে হয়। তাই প্রথম ভাগটা একবার পার করে ফেলতে পারলে আর আটকাবে না ঘটনা! অজপাড়াগায়ে এ কোন প্রানীর আনাগোনা? প্রানী? নাকি পিশাচ? তাকে ধরতে আপাত অপ্রকৃতস্থ কিন্তু শার্পশুটার নায়কের জঙ্গলের ভেতর তাড়া করবার বর্ণনা। ভৌতিক বাড়ি, পুরোনো মন্দির, গ্রামের হাট-বাজার আর আমার মতন উত্তরবংগ থেকে আসা মানুষের জন্য বোনাস হিসেবে “অংপুরের” ভাষা! জমজমাট একটা থ্রিলারই বটে! চাইলে অনেক অনেক ভুল হয়ত ধরা সম্ভব এই বইয়ে। বিবিসির শার্লক সিরিজ দেখা থাকলে সেটার স্পেসিফিক একটা এপিসোডের প্রভাব এই কাহিনীতে বেশ স্পস্ট। টুকটাক প্লট হোলও চোখে পরতে পারে। তবে, মনে রাখা উচিত, নাবিল মুহতাসিম নামক নবীন এই লেখকের প্রথম মৌলিক উপন্যাস এটা। পড়বার পর বাকি দুইটা পড়ার জন্য তর সইছে না (আফসোস, একটা আউট অফ স্টক :( ) সবচাইতে ইন্টিলিজেন্ট লেগেছে পুরো গল্পের মাঝে ৫-৬টা ছোট ছোট ভৌতিক কাহিনী জুড়ে দেয়া। যেগুলো সম্পূর্ণ আউট অব কন্টেক্সট। প্রত্যেকটা পিলে চমকানোর মতন। বিশেষ করে “আজকে পা পেয়েছি! আজকে পা পেয়েছি! আজকে পা পেয়েছি! আজকে পা পেয়েছি! কালকে মাথা চাই! কালকে মাথা দিবি! কালকে মাথা দে! দে দে দে দে!...।।” পড়ে আরেকটু হলেই বিছানা ভিজিয়ে ফেলেছিলাম! ভীতুর ডিম আমি আজো খুজে মরি, সেই বাচ্চাকালে সনি টিভিতে দেখা আহাত সিরিজে যে লো কমোডের মধ্যে দিয়ে হাত বের হয়ে আসত, সেই হাতটা কার? ভাগ্যিস, শ্বাপদসনেরর শেষে প্রতিটা ঘটনার ব্যাখা দেয়া আছে, আই ক্যান স্লিপ ইন পিস :P বইঃ শ্বাপদ সনে লেখকঃ নাবিল মুহতাসিম প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী
Thriller
1
অসাধারণ
Fiction
0
২৫ মার্চ ১৯৭১ সালে যখন তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানে আক্রমণ করে বসে পশ্চিম পাকিস্তানী হানাদাররা তখন ওপারে অনেকেই জানতো না কি হচ্ছে। মিথ্যাচার আর ভুল তথ্য দিয়ে বিভ্রান্ত করা হতো পাকিস্তানিদের মূল ভূখন্ডের মানুষদের। এপ্রান্তে লাখ লাখ মানুষকে অত্যাচার করে মেরে ফেলা হচ্ছিলো আর ওই ভূ-খন্ডে তারা বাঙ্গালীদের বিষেদাগারে ব্যাস্ত। পাকিস্তান আর্মির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি গুল হাসানের জীবনী থেকে অনুবাদ করা এই বই পড়ে ব্যাপারগুলো স্পষ্ট হবে। স্পষ্ট হয়েছে তারা কিভাবে এই বাংলাদেশীদের অবহেলার চোখে দেখতো, কিভাবে তারা বার বার এড়িয়ে গেছে পূর্ব পাকিস্তানিদের প্রাপ্য সম্মানটুকু দিতে। অন্তত তৎকালীন পাকিস্তানিদের মানসিকতা জানতে হলেও বইটা পড়া উচিত।
War
5
#Book_Review বইয়ের নামঃ মিনিমালিস্ট বইয়ের ধরণঃ থ্রিলার বা রহস্যপোন্যাস বইয়ের লেখকঃ মাশুদুল হক প্রচ্ছদঃ মাশুদুল হক প্রকাশকালঃ অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৬ প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী পৃষ্ঠাঃ ৩১৫ মূদ্রিত মূল্যঃ ৩০০ টাকা লেখক পরিচিতিঃ লেখকের জন্ম ঢাকায়। পেশায় চিকিৎসক। বর্তমানে কর্মরত আছেন সিলেটের এমএজি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। লেখালেখির শুরু ছোট গল্প আর ফিচার দিয়ে। লেখকের প্রথম বই “ভেন্ট্রিলোকুইস্ট” বহুল আলোচিত ও পাঠক সমাদৃত হয়েছে। লেখালেখি ছাড়া অনেক স্বেচ্ছাসেবী কাজেও তিনি যুক্ত ছিলেন। তার প্রকাশিত মোট বইয়ের সংখ্যা ৬ টি। সার-সংক্ষেপঃ দীর্ঘ চার বৎসর পর আবার রুমি এবং মারুফ একসাথে জড়িয়ে গেল এক অদ্ভূত রহস্য মীমাংসায়, এক সুদীর্ঘ অনুসন্ধানে । যে অনুসন্ধানে মিশে আছে সহস্রবছর ব্যাপী গোপনে উচ্চারিত প্রশ্ন, মূল্যবান শত শত জীবন এবং অবিশ্বাস্য ঐতিহাসিক সব স্মারক । এর সুবিস্তৃত পটভূমিতে ওরা খুঁজে ফেরে এমন এক সত্য যা ধামাচাপা দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে মিথ্যা আর ছলনায় মোড়া দৈত্যাকার মহীরুহ । মিনিমালিস্ট একটি রহস্য উপন্যাস, নানা ঘটনা উপঘটনার সুদীর্ঘ যাত্রা । কিন্তু এ এক উপলক্ষ্যও, বৃহৎ ও মহতী এক বোধের । সবকালে সবযুগে মহামানবেরা যে পথে হেঁটেছেন, তাঁদের দর্শনকে নতুন করে ধারনের এক প্রচেষ্টা । পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ বইটি ১ বছরের বেশি সময় ধরে সংগ্রহে পড়ে ছিল। আলসেমির কারণে পড়া হয়নি। কিন্তু আজ পড়ে মনে হল বইটি আমার আরো আগেই পড়া উচিত ছিল। গত বছরের বই। তাই হয়ত অনেকেই আগে পড়ে ফেলেছেন বইটি। কিন্তু যারা এখনও পড়েননি, তাদের জন্যে লিখছি... মিনিমালিস্ট বইটি লেখক মাশুদুল হকের প্রথম বই ভেন্ট্রিলোকুইস্টের সিক্যুয়াল বা ২য় পর্ব। ভেন্ট্রিলোকুইস্ট বইটি বের হওয়ার ৪ বছর পর প্রকাশিত হয়েছে এই বইটি। মজার ব্যাপার হলো, প্রথম বইয়ের কাহিনী যেখানে শেষ হয়েছে ঠিক তার চার বছর পরের কাহিনী নিয়ে রচিত হয়েছে এই বইটি। যদিও বলেছি এটি একটি সিক্যুয়াল বই, তারপরেও আলোচ্য বইয়ের প্রথম ও শেষের কিছু জায়গায় ছাড়া ব্যাপারটার উল্লেখ। একেবারে নতুন গল্প এটি। বিশাল প্লট, বিরাট কাহিনী। বহু চরিত্র। বহু ঘটনা। বহু তথ্য। সে সাথে আছে ইতিহাস, রাজনীতি, ধর্ম। কিন্তু এত কিছুর পরেও লেখক বেশ দক্ষ হাতে কাহিনী সামলেছেন। আলোচ্য বইয়ে উঠে এসেছে উপমহাদেশীয় ইতিহাসের অনেক অজানা তথ্য। এসেছে শিখ সম্প্রদায়ের কথা, এসেছে মুঘল সাম্রাজ্যের কথা, এসেছে পৃথিবীর সবথেকে মূল্যবাদ রত্ন কোহ-ই-নূর’এর কথা। আবার এসেছে সুফিবাদ, ধর্ম, ইসা মসীহ, হযরত মুসা নবীর কথাও। সব মিলিয়ে গোটা এক প্যাকেজ বলা যেতে পারে বইটিকে। বইয়ের লেখনীও ছিল বেশ ভালো। গল্পে গতি ছিল খুব। পাঠককে ধরে রাখতে সম্পূর্ণরূপে সক্ষম। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত প্রতিটি অধ্যায়ে চমক। আলোচ্য গল্পে সব আছে। থ্রিল, সাস্পেন্স, মার্ডার, লেজেন্ড, অ্যাডভেঞ্চার...সব! এমনকি লেখক ক্লাইম্যাক্সে যেই চমকটা দিয়েছেন সেটা হজম করতে গেলে পাঠককে আবার সেই ভেন্ট্রিলোকুইস্ট বইটা খুলে দেখতে হবে। আগেই বলেছি বইয়ে তথ্য আছে খুব। অনেক ইতিহাস বর্ণনাও আছে। সাধারণত এরকম তথ্যবহুল বই খুব স্লো হয়। কিন্তু এই বইয়ের ক্ষেত্রে সেটা মনে হয়নি। এমনকি বিষয়গুলো জ্ঞানের কপচামীও মনে হয়নি। বেশ সহজ সরলভাবেই বর্ণনা দিয়েছেন লেখক। আর তার উপর তথ্যগুলো গুগল সার্চ বা উইকিপিডিয়া থেকে নেয়া হয়নি। বেশ খেটেখুটে লেখা হয়েছে সেটা বই পড়লেই বোঝা যায়। তবে এত কিছুর পরেও কিছু জায়গায় নাখোসী এসেছে... প্রথমত, বইয়ের রুমি চরিত্রটি নিয়ে আমার আপত্তি আছে। ভেন্ট্রিলোকুইস্টে রুমির ইনভেস্টিগেশনগুলো করার পেছনে যুক্তি ছিল। ছোটবেলার বন্ধু বিপদে পড়েছে, সে তো এগিয়ে যাবেই। কিন্তু মিনিমালিস্টে আমরা প্রথমেই দেখতে পাই যে সাংবাদিক রুমি একটি লকড রুম মার্ডার নিয়ে রিপোর্ট রেডি করতে গিয়ে গোয়েন্দাগিরি শুরু করে। এবং সেই উপলক্ষে দেশ বিদেশ ঘুরে আসে। ব্যাপারটা আমার কাছে বেশ অবাস্তব ও যুক্তিহীন লেগেছে। একজন স্বাভাবিক কোন কেস নিয়ে কোনদিন এতটা গভীরে যায় না। রুমি পেশায় সাংবাদিক, গোয়েন্দা না। দ্বিতীয়ত, লেখক বইটির গল্প বলার ক্ষেত্রে বেশ জটিলতা দেখিয়েছেন। একবার তিনি রুমির ভাষ্যে গল্প বলান, অমনি পরের অধ্যায়ে মারুফের ভাষ্যে। আবার হঠাৎ করে তৃতীয় পুরুষের মাধ্যমেও গল্প বলেন। আবার কখনও কখনও উপন্যাসের অন্যান্য চরিত্রের ভাষ্যেও ঘটনা বর্ণনা করেন। এর ফলে পাঠক মনে সংশয় দেখা দেয় যা পাঠককে গল্প বুঝতে সমস্যার সৃষ্টি করে। এছাড়া, কয়েক জায়গায় বানান ভুল পেয়েছি। পড়া হয়েছে পরা, মারুফ হয়েছে মারুক, রুমি হয়েছে রুবি ইত্যাদি। তবে বইয়ের প্রচ্ছদটি বেশ সুন্দর। লেখক নিজেই প্রচ্ছদ করেছেন। এরকম সুন্দর প্রচ্ছদের জন্য তাকে বিশেষ ধন্যবাদ জানাই। বইয়ের অন্যান্য বাহ্যিক দিক, যেমন, ছাপা, কাগজের মান, বাইন্ডিং ইত্যাদি বরাবরের মতই ভালো। সবশেষে এটাই বলব যে, ভেন্ট্রিলোকুইস্টের ক্লাইম্যাক্স তেমন ভালো লাগেনি আমার। কিন্তু মিনিমালিস্টের শেষ পর্যন্ত পড়ে পাঠক একটি তৃপ্তির ঢেঁকুর তুলতে পারবেন বলে আশা রাখি! আর হ্যা, আপনাদের অনেকের মনেই হয়তো এই প্রশ্ন এসেছে যে বইটির নাম মিনিমালিস্ট কেন? মিনিমালিস্ট মানে কি? প্রশ্নটার উত্তর বইতেই দেওয়া আছে, তাই আর আলাদা করে ব্যাখ্যা করলাম না। আপনারা যারা বইটি পড়বেন তারা এমনিতেই উত্তরটি পেয়ে যাবেন! আর যদি খুব ইচ্ছা করে শব্দটির মানে জানবার, তাহলে গুগল সার্চ করে দেখতে পারেন। ধন্যবাদ! হ্যাপি রিডিং! রেটিংঃ ৪.৫/৫
Thriller
1
রিভিউঃ২২ ১১ নভেম্বর ২০১৮ বইঃ সে আসে ধীরে লেখকঃ হুমায়ন আহমেদ ধরনঃ উপন্যাস মূল্যঃ ১৫০ টাকা হিমু নামের এই অদ্ভুত চরিত্রের মাঝে ফুটিয়ে তুলেছেন সমাজের বিভিন্ন দিক। হিমুর বৈশিষ্ট্য অন্য রকম অনেক অদ্ভুত। সে সতন্ত্র ব্যাক্তিত্বের অধিকারি সে সব সময় যুক্তি বিরোধী মতানুসারে আচরন করে মানুষকে বিভ্রান্ত করে তুলে। তার কোন লোভ লালসা, হিংসা, ভয়, কিছুই নেই। তবে সে বেশ বুদ্ধিমান ও রসবোধ সম্পন্ন। বাউন্ডলে জীবন যাপন করেও সবসময় তিনি মানুষের উপকারে চলে আসেন । মোটামুটি ভাবে বলতে গেলে আমি হিমু সিরিজের বেশ ভক্ত। হলুদ পাঞ্জাবী পড়া এই চরিত্রটি আমার কাছে বেশ অর্থ বহ মনে হয়। হিমু সিরিজের " সে আসে ধীরে" নামক উপন্যাস পড়লাম। বইটির কাহিনী সংক্ষিপ্ত বলতে গেলে হিমুর খালার এক অষ্টেলিয়া প্রবাসী নি:সন্তান বান্ধবীর জন্য দত্তক ছেলে লাগবে। যেন তেন ছেলে হলে চলবে না তার বেশ কিছু বৈশিষ্ট্য থাকা লাগবে। হিমুর খালা হিমুকে দায়িত্ব দেওয়ার পর হিমু তার পরিচিত এক পরিবারের ছেলেকে সিলেক্ট করে। নিম্নবিত্ত পরিবারটির জীবন চিত্র ফুটে উঠছে গল্পটির মধ্যে। ছেলেটির মা বেশ অসুস্থ সুস্থ করার জন্য বেশ কিছু টাকা লাগবে যা ছেলেটির বাবার কাছে সম্ভব নয়। ছেলেটিকে দেখার পর তার খালার বান্ধবীর পছন্দ না হলেও কিছুক্ষণ কাছে রাখার পর সে ছেলেটির মায়ায় জড়িয়ে পড়ে। নানা রকম ঘটনা চলতে থাকে কাহিনী তারপর একসময় হিমুর খালার বান্ধবী জানতে পারেন যে তিনি মা হতে পারবে। হিমুকে তিনি উপহার দিতে চান কিন্তু হিমুর চাওয়া হয় শিশুটির মাকে সুস্থ করার জন্য তাকে বিদেশে পাঠানোর ব্যাবস্থা করা। ব্যক্তিগত মতামতঃবইটি বেশ কিছু মজার ঘটনা তুলে ধরেছেন হুমায়ন আহামেদ যা অনেক ভাল লাগে।উচ্চবিত্ত পরিবার ও নিম্নবিত্ত পরিবারের জীবনযাপন অনেকাংশ ফুটে উঠে এই বইটিতে। বইটির গল্প আহামরি না হলেও কেমন যেন একটা টান অনুভব হয় পড়তে গিয়ে। পাঠকদের বলব হুমায়ন আহামেদের বই যারা পড়েন তাদের জন্য উপহার সরুপ গল্প এটি। তাই বলব মিস করবেন না পড়লে। আশাকরি আপনাদের কাছেও ভাল লাগবে
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা || রিভিউ || বই : ইনটেনসিটি মূল : ডিন কুন্টজ অনুবাদ : শাহেদ জামান প্রকাশক : আদী প্রকাশন প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ ঘরানা : সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার প্রচ্ছদ : নাজিম উদ দৌলা পৃষ্ঠা : ২৮৫ মুদ্রিত মূল্য : ৩০০ টাকা শান্তিময় একটা পরিবেশে ছুটি কাটাতে এসে বিপদের আশঙ্কা করে ক'জন! বান্ধবী লরা টেম্পলটনের প্রাসাদোপম বাড়িতে বেড়াতে এসে চায়না শেফার্ডও কোনরূপ বিপদের আশঙ্কা করেনি। কিন্তু যেকোন বিপদ কখনোই বলেকয়ে আসেনা। বিকৃত মানসিকতার এক উন্মাদ খুনির কবলে পড়ে সেই রাতেই প্রাণ হারালো পুরো টেম্পলটন পরিবার। চারিদিকে গানপাউডার আর রক্তের অসুস্থ গন্ধে ছেয়ে গেলো। অনেকটা ভাগ্যের সহায়তাতেই বেঁচে গেলো চায়না শেফার্ড। সাদামাটা এই মেয়েটা এই একটা রাতেই যেন অনেকটা পালটে গেলো। দাঁতে দাঁত চেপে খুনির পেছনে ধাওয়া করলো সে। এদিকে নিজ গন্তব্যে ফেরার সময়েও পথে দারুন নৃশংসতার সাক্ষর রেখে যেতে লাগলো প্রচণ্ড বুদ্ধিমান এই খুনি। নিজেকে মৃত্যপথের যাত্রী দাবি করা এই খুনি বারবার সদম্ভে শুধু একটা কথাই উচ্চারণ করে, "God fears me!" নিজের কাজেকর্মে অত্যন্ত গোছালো এই ঠান্ডা মাথার খুনিকে একা হাতে কিভাবে সামলাবে এটা ভেবেই যেন কালো ঘাম ছুটতে লাগলো চায়নার। বিপদ যখন আসে ভাইবোন সব সাথে করেই নিয়ে আসে। খুনির কবল থেকে প্রথমবার বেঁচে যাওয়া চায়না শেফার্ডের প্রতিটা পদক্ষেপেই ওঁৎ পেতে আছে বিপদ। এদিকে ভয়ঙ্কর এই খুনির বাড়ির সেলারে অনেকদিন ধরে বন্দি জীবনযাপন করতে বাধ্য হচ্ছে ষোড়শী এক মেয়ে। তাকে উদ্ধার করারও একটা জোর তাগিদ অনুভব করলো চায়না শেফার্ড। শিকার যখন নিজে নাচতে নাচতে বাঘের গুহায় উপস্থিত হয়, তখন কেমন হয়? প্রিয় পাঠক, আপনিও ঠিক এমনই একটা টানটান উত্তেজনাকর অবস্থা অবলোকন করবেন 'ইনটেনসিটি' উপন্যাসে। যার প্রত্যেকটা অধ্যায়ে ঠাসা আসে উত্তেজনার বারুদ, যেকোন সময় বিস্ফোরিত হওয়ার জন্য প্রস্তুত! ব্যক্তিগত মতামত : আমেরিকার জনপ্রিয় থ্রিলার লেখক ডিন কুন্টজের অসাধারণ সৃষ্টি গুলোর একটা 'ইনটেনসিটি'। এর আগে কুন্টজ সাহেবের হরর থ্রিলার 'ডার্কফল' ও সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার 'ভেলোসিটি' পড়ার সৌভাগ্য হয়েছে। তবে অনুবাদক শাহেদ জামানের অনুবাদ এর আগে পড়ার সুযোগ হয়ে ওঠেনি। সেই অচলাবস্থাও এবার কেটে গেলো। শাহেদ জামানের অনুবাদ যথেষ্ট সাবলীল ছিলো। পাঠকের সামনে সুখপাঠ্য ও সহজবোধ্য হিসেবে অনুবাদকর্মকে উপস্থিত করতে পারলে তবেই সেই অনুবাদককে সার্থক বলা যায়। আর সেই যুক্তি মেনে শাহেদ জামানকেও আমি শতভাগ সার্থক বলবো। একটা সাধারণ মেয়ে, যার অতীতটা খুব একটা সুখময় ছিলোনা। বারবার যে নিজেকে সমস্ত ঝুটঝামেলা থেকে দূরে রাখতে চেয়েছে, তার হঠাৎ পরিবর্তনের গল্প 'ইনটেনসিটি'। সেই সাথে এই গল্প মাস্টারমাইন্ড এক সাইকোপ্যাথের, যার জীবনে 'অনুভূতি'-এর অনুভব ছাড়া কোন কিছুর স্থান নেই। আর একই সাথে এই গল্প অপরিচিত দু'জন মানুষের একে অপরের পাশে দাঁড়ানোর গল্প। একটা আদর্শ সাইকোলজিক্যাল থ্রিলার হয়ে ওঠার পাশাপাশি 'ইনটেনসিটি' সন্দেহাতীত ভাবে একটা মানবিক গল্পও হয়ে উঠেছে। আর সেই সাথে উপন্যাসটার প্রতি ভালো লাগা বাড়িয়ে তুলেছে আমার। ছোটখাটো কিছু প্রিন্টিং মিসটেক ছিলো। বইয়ের শেষের দিকে এসে কয়েকবার চায়না শেফার্ড হয়ে গেছে লরা টেম্পলটন। তবে ভুল গুলো বিরক্তিকর পর্যায়ে যায়নি। নাজিম উদ দৌলার প্রচ্ছদ মোটামুটি ভালো লেগেছে। আমার মতো লেট লতিফ পাঠক, যারা এখনো ২০১৫ সালে প্রকাশিত এই অনুবাদটা পড়েননি তারা পড়ে ফেলতে পারেন। সময়টা দ্রুত যাবে। রেটিং : ৪.৮/৫ © শুভাগত দীপ
Thriller
1
বাস্ত কহিনীর উপর ভিত্তি করে লেখা উপন্যাসটা ভালো হয়েছে। যেন চোখের উপর সব ভেসে উঠেছে............................
Fiction
0
#রকমারি_পাঠক_সমাগম_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_৪ পর্ব - ৪ বইয়ের নাম: শ্যাল উই টেল দ্য প্রেসিডেন্ট লেখক: জেফরি আর্চার অনুবাদক: অনীশ দাস অপু ঘরানা: কনস্পিরেসি থ্রিলার/স্পাই থ্রিলার/পলিটিকাল থ্রিলার প্রকাশনী: রোদেলা প্রকাশনী প্রকাশকাল: ফেব্রুয়ারি, ২০১০ প্রচ্ছদ: হাসান খুরশীদ রুমী পৃষ্ঠা: ২২৪ মূল্য: ২৫০ টাকা অনলাইন পরিবেশক: রকমারি.কম . #লেখক_পরিচিতি: জেফরি আর্চার ১৯৪০ সালের ১৫ এপ্রিল ইংল্যান্ডের একটা মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। এই বিশ্ব বরেণ্য লেখকের জীবনে কী নেই? ব্যবসায় প্রতারণার শিকার হয়ে সর্বশান্ত হওয়া থেকে শুরু করে বৃটিশ পার্লামেন্টের সদস্য হওয়া বা জেল খাটা, কী হয়নি তার জীবনে! কৈশোরে ইংরেজি সাহিত্যে 'ও লেভেল' করেই বিভিন্ন ধরণের ছোট ছোট কাজের পাশাপাশি তিনি মিলিটারীতে ট্রেনিং নিয়েছেন এবং কিছুদিন মেট্রোপলিটান পুলিশেও কাজ করেছেন। অর্থনৈতিক দুরবস্থা কাটাতে ১৯৭৪ সালে তিনি লেখালেখি করার সিদ্ধান্ত নেন। ৩৬ বছর বয়সে তার প্রথম বই "নট আ পেনি মোর" প্রকাশিত হয়। এরপর যত বই লেখেছেন বেশির ভাগই নিউইয়র্ক বেস্টসেলার তালিকায় চলে গেছে। তার বই ৯৭টি দেশে ৩৭টি ভাষায় প্রকাশিত হচ্ছে। তিনিই একমাত্র লেখক যিনি সবচেয়ে বেশিবার আন্তর্জাতিক বেস্টসেলার হয়েছেন ( ১৮বার ফিকশনে, ছোট গল্পে চারবার এবং নন ফিকশনে একবার )। তাঁর দুটি বই Paths of glory এবং False Impression সিনেমা হিসেবে নির্মিত হয়েছে। এমনিই তো আর 'দ্য টেলিগ্রাফ' তাকে নিয়ে নিম্নোক্ত উক্তি করেনি: "If there were a Nobel prize for storytelling, Archer would win." . #অনুবাদক: অনীশ দাস অপুর জন্ম ৫ ডিসেম্বর ১৯৬৯। জন্মস্থান বরিশাল। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ে অনার্সসহ এম. এ করেছেন ১৯৯৫ সালে। লেখালেখির প্রতি তার ঝোক ছেলেবেলা থেকে । এ পর্যন্ত তাঁর অনুদিত গ্ৰন্থ সংখ্যা ১০০’র বেশি। অনীশ দাস অপু লেখালেখির পাশাপাশি সাংবাদিকতা পেশায় জড়িত। তিনি দৈনিক যুগান্তর- এ সিনিয়র সাব এডিটর হিসেবে কাজ করেছেন । তবে লেখালেখিই তার মূল পেশা এবং নেশা । . #পাঠ_পর্যালোচনা : মেট্রোপলিটন পুলিশ কন্ট্রোল রুম থেকে ওয়াশিংটনে অবস্থিত এফবিআইয়ের ফিল্ড এজেন্টদের প্রধান নিক স্টেমস একটি ফোনকল পায়। অ্যাঞ্জেলো মেক্সিস নামের একজন পায়ে গুলি খাওয়া অবৈধ গ্রিক অভিবাসী কথা বলতে চায় শুধু এফবিআইয়ের সাথে।মূল কাহিনী শুরু হয় এই গ্রিক লোকটিকেই দিয়ে। খবর পেয়ে দু'জন ফিল্ড এজেন্টকে পাঠানো হয় উইলসন হাসপাতালে অ্যাঞ্জেলো মেক্সিসের সাথে কথা বলার জন্য। ব্যারি কোলভার্ট এবং মার্ক অ্যান্ড্রুজ ভয়ে ভীত মেক্সিসের সাথে কথা বলে জানতে পারে একটি ভয়ানক চক্রান্তের কথা। কী ছিলো তা? . সদ্য নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট এডয়ার্ড কেনেডির সামনে নাকি ঘোর বিপদ। খবরটি সত্য মিথ্যা যাই হোক বসকে রিপোর্ট করে এজেন্ট দুজন। বসের নির্দেশে অ্যাঞ্জেলো মেক্সিসকে পাহারা দেয়ার জন্য মার্ক ফিরে আসে উইলসন হাসপাতালে। কিন্তু বড় অদ্ভুতভাবে এফবিআইকে কোন কিছু করার সুযোগ না দিয়ে নিষ্ঠুরভাবে গলা কেটে খুন করা হলো অ্যাঞ্জেলো মেক্সিস ও তার পাশের কেবিনের রোগীটাকে। মার্ক অ্যান্ড্রুজ বুঝতে পারে না কি করবে সে। বস নিক স্টেমস এবং এজেন্ট কোলভার্টকে বাসায় এবং অফিসে ফোন করে পাওয়া যাচ্ছে না। অথচ তাদের অনেক আগেই বাসায় পৌছে যাওয়ার কথা। অন্য কোন উপায় না দেখে মার্ক ফোন করে এফবিআইয়ের ডিরেক্টর টাইসনকে। অনেক কষ্টে পনের মিনিটের জন্য ডিরেক্টরের সাথে দেখা করার অনুমতি পায়। তবে সে বাড়ি ফেরার সময় জানতে পারে মারাত্মক এক কার অ্যাক্সিডেন্টে মেরে ফেলা হয়েছে নিক স্টেমস এবং এজেন্ট কোলভার্টকে। প্রেসিডেন্টের আসন্ন বিপদ সম্পর্কে যারা যারা জানে তাদের একে একে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে পৃথিবী থেকে। রাত সাড়ে আটটা নাগাদ খবরটি জেনে গেল পাঁচজন মানুষ। আর রাত সাড়ে নয়টার মধ্যে এদের চারজন হয়ে গেল খুন! এফবিআই’র স্পেশাল এজেন্ট মার্ক অ্যান্ড্রুজ এখন সম্পূর্ণ একা। ঠিক সাতদিনের মাথায় গুপ্তঘাতকের হাতে প্রাণ হারাতে যাচ্ছেন তৃতীয় কেনেডি। মার্ক কি পারবে মার্কিন প্রেসিডেন্টকে নিশ্চিত মৃত্যুর হাত থেকে রক্ষা করতে? . এফবিআইয়ের ডিরেক্টর টাইসনকেও ঠিক মত বিশ্বাস করতে পারছে না সে।টাইসনের পুরো নাম এইচ এ এল টাইসন। এই বদমেজাজী ডাইরেক্টরকে এফবিআই এর সবাই মজা করে নামের অাদ্যক্ষর দিয়ে "হল্ট" ডাকে। কিন্তু তারা জানে না, সেই আগের তিনটা অক্ষরের মাঝে লুকিয়ে আছে আরেক রহস্য। কী সেটা? . আবার মার্কও নিজের অজান্তে হয়ে উঠছে হল্টের সন্দেহভাজন। সে প্রেমে পড়ে গেছে এলিজাবেথের। যার বাবাকেও রাখা হয়েছে সম্ভাব্য অপরাধীর সর্ট লিস্টে! . খুন হচ্ছে একের পর এক। অন্যদিকে খুনি মাফিয়ারা এক সিনেটরের সহায়তায় তাদের সব কাজ গুছিয়ে ফেলেছে। শুধু আড়াই মিনিট সময় প্রয়োজন। ২০০ গজ দূর থেকে স্নাইপার রাইফেল দিয়ে জাপানী শার্প শ্যূটারটি একটি চিনাবাদামকে আঘাত করতে পারে, আর প্রেসিডেন্টের মাথাতো আরও অনেক বড়! কিন্তু হল্ট এখনও জানে না সিনেটরটি কে। সে জানতে চায়। পৌঁছাতে চায় গোড়ার অপরাধীর কাছে। তারা প্রেসিডেন্টের নিরাপত্তার জন্য কোনো খবরই লিক করতে চায় না। কিন্তু আইন ঘোষণার দিন প্রেসিডেন্টকে মঞ্চে আনা মানে তার জীবন জিম্মি করা। কিন্তু এই আইনের ঘোষণাটা দেশের জন্য খুবই জরুরি। কী এমন আইন ছিলো তা? এখন তারাই বা কী করবে? তারা পরস্পর ভেবে চলছে, 'প্রেসিডেন্টকে কী খুলে বলব সব?' 'শ্যাল উই টেল দ্যা প্রেসিডেন্ট?' . #ব্যক্তিগত_মতামত: এককথায় বলব আমার পড়া সেরা একটি থ্রিলার। পড়তে শুরু করলে বই থেকে ওঠার কোনোই উপায় থাকবে না। পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা সাসপেন্স আর রহস্যে ভরা। মার্ক আর এলিজাবেথের মজার প্রেমময় কথোপকথন পড়ে খুব হেসেছি। এতই চমৎকার আর বাস্তব লেখনি যে পড়ার সময় মনে হবে পুরো হোয়াইট হাউজে আপনি ঘুরে ঘুরে দেখছেন সব। আর এত সহজে হোয়াইট হাউজসহ পুরো আমেরিকা ভ্রমণের সখ কারই বা না আছে! তাই চোখ বুজে হাতে নিতে পারেন বইটি। আর অবশেষে কী ঘটেছিল প্রেসিডেন্ট এডয়ার্ড কেনেডির ভাগ্যে? এটাও জানতে পারবেন শ্বাসরুদ্ধকর উপন্যাসটি থেকে। . #সমালোচনা: কিছুু বানান ভুল ছিলো। হয়তো টাইপিং মিস্টেক। এক জায়গায় ১৯৮৩ সালেকে লেখা হয়েছে ১৯৮৯। এটা চোখে লেগেছে। তাছাড়া অসাধারণ অনুবাদ। . #ব্যক্তিগত_রেটিং: ৪.৯/৫ লিখেছেনঃ আয়েশা সিদ্দিকা
Thriller
1
বইটিতে লুকিয়ে আছে গভীর প্রেমের এক লুকায়িত অনুভূতি। বইটি শেষ পর্যন্ত পড়তে হবে এর রসটুকু নিতে চাইলে ।
Fiction
0
টোটালি বালশিট! ****বুলশিট
Political
3
যারা মুখবইয়ে 'ভালবাসার গল্প' পেজের সদস্য এবং সেখানে প্রকাশিত লেখার নিয়মিত পাঠক তাদেরকে একুয়া রেজিয়া আপুর লেখা সম্পর্কে বলা আমার জন্য ধৃষ্টতা।বর্তমানে ছোট গল্পের শক্তিশালী লেখক লেখিকার তালিকা করতে বললে আমি চোখ বুজে ওনার নাম প্রথম ৫ জনে রাখবো। বইয়ের পৃষ্ঠা সংখ্যা মাত্র ৭৮। এই ৭৮ টা পৃষ্ঠা যে কোন মায়াজালে আটকে রেখেছিল পুরো ১ ঘণ্টা তা বলার মতো শব্দ খুঁজে পেতে কষ্ট হচ্ছে। কষ্ট হয় এই ভেবে যে এত তাড়াতাড়ি শেষ হয়ে গেল কেন গল্পটা! আপাতত তিনটি শব্দে 'কিছু বিষাদ হোক পাখি' কে আমি প্রকাশ করতে পারি-'সহজ, সত্য এবং সুন্দর'। সহজ বলছি কারণ বইটা পড়ে আরাম পেয়েছি সবদিক দিয়ে, চোখেও যেমন মনেও তেমন।কাহিনী সরল, জায়গায় জায়গায় অনর্থক দর্শনের কথা নেই।মূল কাহিনী বাদে অন্য কথা বা এনিগমাগুলো যেখানে ঠিক যতটুকু দরকার ঠিক ততটুকু খুবই সরলভাবে বিশ্লেষণ করা হয়েছে। পাঠককে জটিল চিন্তায় ফেলে দেবার কোন ষড়যন্ত্র নেই।এক জায়গা একবারের বেশি তিন চারবার পড়ে ভাবতে হয়না না বুঝতে পারবার জন্য।যদি কেউ তিন চারবার পড়েও সেটা সম্পূর্ণভাবে নিজের ভাল লাগা থেকে পড়ে।সত্য এই কারণে যে পুরো বইটা পড়ে এক জায়গায়ও কোনরকম কোন খটকা লাগেনি যে গল্পটা বানানো, নাটকীয়তায় ভর্তি।বরং বইয়ের চরিত্রের মুখের সংলাপ থেকে শুরু করে তাদের ভাবনা চিন্তা এমনকি পারিপার্শ্বিক পরিবেশ-পরিস্থিতি বর্ণনাও অনেক বাস্তবসম্মত।এই বইয়ের সবচেয়ে বড় পজেটিভ দিক হলো ভিতরের প্রত্যেকটা টুকরো টুকরো ঘটনা বর্ণনার সাথে পাঠকরা নিজেদের কোন না কোন দিক দিয়ে মিল খুঁজে পেতে সক্ষম।একটা বই উপভোগ করার জন্য সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয় কল্পনাশক্তি।পাঠকের কল্পনা করার শক্তি যত বেশি ভাল হবে সে তত বেশি কোন বইকে আপন করে নিয়ে উপভোগ করতে পারবে। 'কিছু বিষাদ হোক পাখি'র ক্ষেত্রে বলতে পারি লেখিকার নিজের জাদুকরী ক্ষমতা আছে যা দিয়ে তিনি পাঠকের কল্পনাশক্তি উশকে দিতে পারার সামর্থ্য রাখেন।তার লেখার ভঙ্গী এতটাই সাবলীল যে কিছু কিছু সময় মনে হয়েছে আমার কল্পনা করবার শক্তি না থাকলেও চলতো। উপরে এত কথা বলবার পর সুন্দর কেন বলেছি তা আর বিশদভাবে বলবার প্রয়োজন দেখিনা।যদি কেউ আমাকে শুধু একটি কারণও দেখাতে বলে সুন্দর বলার পিছে আমি বলবো আটপৌরতা,সাধারণ থেকেও অসাধারণতা যা মুগ্ধ করে। ছোট একটা পরিবারের সাধারণ একটা গল্প,অনেকের মাঝে থেকেও একা হবার গল্প,দিন শেষে ভিন্ন ভিন্ন সত্ত্বার সকলের এক অনুভূতির মালিক হবার গল্প,মিল খুঁজে পাবার গল্প, বিষাদগুলোকে পাখি করে দেবার গল্প-শুধু ভাল লেগেছে বললেও সেটা মনে হয় কম বলা হবে। কনটেমপোরারি গল্প পড়ে পড়ে যারা বিরক্ত তাদের কাছেও ভাল লাগতে বাধ্য কেননা প্রধান চরিত্রের অনুভূতিগুলোর সাথে নিজের মিল খুঁজে পাওয়া যায় কোন কষ্ট না করে।পড়তে পড়তে একসময় নিজের কষ্টগুলোকেও পাখি করে উড়িয়ে দিতে ইচ্ছা করে,চকচকে কভারের মুগ্ধ করা নীল সাদা রঙে আটকে দিতে ইচ্ছা করে। পরে অবশ্য মনে হয় সব বিষাদ কি আর পাখি হয়?তবুও কোথাও না কোথাও কিছু আশা লুকানো থাকে। বইটা শেষ করে তাই মেঘদলের গানের লাইন গুলোই মাথায় ঘুরে - কিছু বিষাদ হোক পাখি নগরীর নোনা ধরা দেয়ালে কাঁচপোকা সারি সারি নির্বাণ, নির্বাণ ডেকে যায় ।। কিছু ভুল রঙের ফুল ফুটে আছে আজ পথে কিছু মিথ্যে কথার রং আমাদের হৃদয়ে ।।
Fiction
0
"ব্ল্যাক হোলের বাচ্চা" নামটা শুনেই মুহূর্তের জন্য অবাক হয়ে যেতে হয় । মনের ভেতর ভাবনাটা চলে আসে,"ব্ল্যাক হোলের কথা তো শুনেছি কিন্তু তাই বলে ব্ল্যাক হলের বাচ্চা !! সেটা আবার কি?" হ্যাঁ এই ব্ল্যাক হোলের বাচ্চাটাকে নিয়েই লিখা মুহাম্মদ জাফর ইকবালের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী "ব্ল্যাক হোলের বাচ্চা" শহরের মাঝে নামকরা স্কুল অক্সব্রীজ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল । স্কুলটার অনেক সুনাম বাইরে । সবকিছুর মান সেখানে যেমন ভালো তেমনি বেতনের অঙ্কটাও বেশি । সেখানে শুধু বড়লোকের ছেলে মেয়েরাই পড়ার সুযোগ পায় । অন্যদিকে কুখ্যাত সন্ত্রাসী মহব্বতজানের নামে আর একটি স্কুল হাজি মহব্বতজান উচ্চ বিদ্যালয় । এই স্কুল্টা একেবারেই অক্সব্রীজ স্কুলের উল্টো । এখানে কখনো ক্লাসগুলোও ঠিকভাবে হয়না । আর এই স্কুলেরই ছাত্র ছাত্রি ইবু, ঝুম্পা, ফারা, আর বগা । অক্সব্রীজ স্কুল নিয়ে তাদের বেশ হিংসে হতো তেমনই কৌতূহলও ছিলো বেশ । তাই তারা যেদিন জানতে পারলো স্কুলভবনটার একপাশ অজ্ঞাত এক বিস্ফোরণে ভেঙ্গেচুড়ে গেছে তারা বেশ অবাক হলো ।পত্রিকা ঘেটে জানতে পারলো এক রহস্যময় বালকের কথা কিন্তু কথাটা কেনো যেন সবাই চেপে যায় । কিন্তু কিছুদিন পর সেই রহস্যময় ছেলেটিই এসে ভর্তি হয় ইবুদের স্কুলে । ছেলেটার নাম মিঠুন । বিজ্ঞান তার খুব ভালো লাগে । মিঠুনের সাথে ইবুদের বন্ধুত্ব হয়ে যায় । মিঠুন থেকেই তারা জানতে পারে কিভাবে তার এক বৈজ্ঞানিক গবেশনার জন্য অক্সব্রীজ এর একটা অংশ ধ্বসে পড়ে । মিঠুন তাদেরকে দেখায় সেই এক্সপেরিমেন্ট থেকে পাওয়া রহস্যময় একটা জিনিস যা চোখে দেখা জায় না কিন্তু তার অস্তিত্ব অনুভব করা যায় । মিঠুন জিনিসটার নাম দিয়েছে ব্ল্যাক হলের বাচ্চা । আর এই ব্ল্যাক হোলের বাচ্চা নিয়ে ঘটতে থাকে নানা ঘটনা । মিঠুন ও তার বন্ধুরা নানা বিপদের মাঝেও পড়ে এই জন্য । এর পর কি হলো ব্ল্যাক হোক হোলের বাচ্চাটার?? জান্তেই পাঠক ঘুরে আসতে পারে মিঠুনের বৈজ্ঞানিক গবেষণামূলক জগতটাতে । এই বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীটি আমাদের বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহী হরে তোলে, আমাদের সৃজনশীলতাকে উৎসাহিত করে তোলে ।
Science-Fiction
4
প্রবাসী মানুষের দুঃখ ও দুর্দশা ‘পরাধীনতা’র কাহিনিতে উন্মোচিত হয়েছে। উত্তমপুরুষের জবানিতে জার্মান প্রবাসী নায়কের চাকরি ও বাসস্থানের অভাব এবং দেশে ফেলে আসা পরিজনদের জন্য কাতরতা গভীর মমত্বে চিত্রিত হয়েছে।
Fiction
0
বাংলাদেশ একটি স্বাধীন দেশ, যে দেশ সৃষ্টির নৈপথ্যে রয়েছে একজন কিংবদন্তির সংগ্রাম। যার জীবন শুরু হয়েছে সংগ্রাম দিয়ে আর শেষ ও হয়েছে সংগ্রামে! যে দেশের মহা আখ্যানের সূচনা হয় এক বর্ষার বৃষ্টিতে যেন তা শেষ হয়েছে ফাগুনে সমারোহতে। যাঁর মূল কেন্দ্রে আবর্তিত হয়েছে মহান এক পুরুষ। যার নাম বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। ১৯৬২ থেকে ১৯৬৯ সাল সময়পরিসরে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান তথা ভবিষ্যৎ বাংলাদেশের মাটিতে চলমান রাজনৈতিক-সামাজিক ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবর্তিত এ উপন্যাসের কাহিনি। লেখকের যারা ভোর এনেছিল,উষার দুয়ারে, আলো-আঁধারের যাত্রীর পরবর্তী খণ্ড এই উপন্যাস 'এ পথে আলো জ্বলে'। উপন্যাসের শুরুটা ১৯৬২ সালের আষাঢ়ের এক সকালের স্মৃতিতে ধানমন্ডি ৩২ নাম্বার সড়কের ৬৭৭ বাড়ির এক জলসার চিত্র। তারপর যেখানে উঠে এসেছেন ৬২র ছাত্র আন্দোলনের নায়কেরা। ৬৬'র ৬ দফার আদ্যপ্রান্ত, রাজনীতির হালচাল, বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দীন আহমেদ সহ রাজনৈতিক বন্দীদের কারাগারের জীবন, এক বিদ্রাহী নারীর দৈনন্দিন সংগ্রাম, অজস্র যাত্রা। কি অবিচল, ক্ষুরধার যিনি কঠিন বিপদেও অবিচল থাকেন। ১৯৬৬ সালে বঙ্গবন্ধুর ৬ দফা দাবি উত্থাপন, তাঁকে ঘিরে গড়ে ওঠা আন্দোলন, তাঁর গ্রেপ্তারের পর গ্রেপ্তার হওয়া, সর্বংসহা সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেছা রেনুর সংগ্রাম, শেখ হাসিনার সক্রিয় ছাত্ররাজনীতিতে আসা, মওলানা ভাসানীসহ বামপন্থীদের ভূমিকা, জেলে তাজউদ্দীনের জীবন, পিতার সান্নিধ্যবঞ্চিত শেখ মুজিবের ছোট ছেলেমেয়েদের দুঃখ-বেদনা আনিসুল হক স্যার এমনভাবে তুলে ধরেছেন যে পড়তে গিয়ে মনে হবে বর্ণিত ঘটনাগুলো চোখের সামনে দিব্যি ঘটে চলেছে। এই পৃষ্ঠা পড়তে গিয়ে কিছুক্ষণ থেমে থাকলাম, অশ্রুতে বিমোরিত হলাম, আহ্!আমাদের কি কষ্টের ইতিহাস! ঘটনার মুখে শেখ মুজিব ‘মাটিতে বসে পড়লেন। বাংলার ধূলিমাটি তিনি স্পর্শ করলেন পরম মমতায়।’ তারপর ‘বিড়বিড় করে বলতে লাগলেন, “আমার এই দেশেতে জন্ম যেন এই দেশেতে মরি।” দেখতে দেখতে এসে যায় আটষট্টি সাল। শুরু হলো কথিত আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা। আগরতলা মামলায় জড়ানো হলো জাতির এই কিংবদন্তিকে, কারাগারে থাকতে হলো দীর্ঘদিন। এই ষড়যন্ত্রের প্রেক্ষিতে ফুঁসে উঠল ছাত্রসমাজ। তারা সারা দেশে গড়ে তুলল ‘সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ’। শুরু হলো মিছিল। সংগ্রাম। সৃষ্টি হলো গণজোয়ার। এই সংগ্রামে, মিছিলে গেল কত প্রাণ! ১৯৬৯ সালে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় যখন জেল কর্তৃপক্ষের পদস্থ আঞ্চলিক সেনাপ্রধান মোজাফফর আহমেদ এসে বলেন, তাঁকে মুক্তি দেওয়া হচ্ছে। সন্দেহ হয় মুজিবের। মাথা উঁচু করে বাইরে বেরিয়ে দেখতে পান সামরিক বাহিনীর গাড়ির বহর। তিনি বঙ্গবন্ধুকে বলছেন 'আপনি প্যারোলে মুক্তি নেন।' তিনি বললেন, 'আমার নাম মুজিবুর রহমান। আমি কথার নড়চড় করি না।' তার এই অনুপ্রেরণার মূলে রয়েছে তাঁর স্ত্রী রেণু। বারবার চোখ ভিজে আসছিলো কতোখানি শক্তিমান আর বিদ্রোহী সে অনিন্দ্য নারীটি। যিনি এত্ত বিপদের পর ও স্বামীকে সাহস, অনুপ্রেরণা দিয়ে যাচ্ছেন। প্রিয়তম স্বামী জেলে অথচ তিনি কষ্ট লুকিয়ে দৃঢ চিত্তে এগিয়ে নিচ্ছেন একটি দেশের মানুষকে নিয়ে। কারাবন্দী বাবাকে লেখা রেহানার আবেগঘন চিঠি থরথর করে দিবে প্রতিটি পাঠকের হৃদয়কে,চিঠির কথাগুলো নিয়ে যাবে হৃদয়ের গভীরতায়! অশ্রুতে ভাসবে পাঠকের চোখ! "আব্বা আপনার কথা খুব মনে পড়িতেছে। এবার কি আমি আপনাকে প্রথম ফুল দিতে পারিবো না? যদি ১৭ মার্চ আমাদেরকে দেখা করতে দেয়, তাহা হইলে অবশ্যই আমি আপনার জন্য বেলি ফুল নিয়া যাইব।" দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর শেষে শেখ মুজিবের নিঃশর্ত মুক্তি দেওয়া হলো , সর্বদলীয় ছাত্র সংগ্রাম পরিষদের তরফ থেকে তাঁকে ‘বঙ্গবন্ধু’ উপাধীতে ভূষিত করা হয় তাকে। এই উপন্যাসে উঠে আসলো আরেক কিংবদন্তি তাজউদ্দীন আহমেদের সংগ্রামের কথা, যার সংগ্রামের পিছনের আরেক নারীর অবদান লিলি তথা জোহরা তাজউদ্দীনের সংগ্রাম। এই উপন্যাসে উঠে আসে শেখ হাসিনার রাজনীতির উত্থান, তাঁর বিয়ে; কবি নির্মলেন্দু গুনের বাউন্ডুলে জীবন, কবিতার আকুতি। . মিছিলের স্লোগানে যখন সাথে জনতার কন্ঠে রব উঠে "আয়ুবশাহির গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথে। জেলের তালা ভাঙব, শেখ মুজিবকে আনব।" তখন মনে হয় আমিই যেন মিছিলে শামিল। মাকে লেখা মতিউরের আবেগঘন চিঠি, "মা, মিছিলে যাচ্ছি। যদি ফিরে না আসি, মনে করো মা তোমার ছেলে বাংলার মুক্তির জন্য শেখ মুজিবের মুক্তির জন্য জীবন দিয়েছে।" এই চিঠি যেন এক সন্তান নিশ্চিত মৃত্যু যেন ও মরতে যাচ্ছে সে পথে। কারণ- সে পথ ভালোবাসার পথ, দেশের পথ, ন্যায্যতার পথ,অধীকার আদায়ের পথ,এই কখনো থেমে থাকে না কারণ এই পথেই আলো জ্বলে! চিঠিটি পড়ে অশ্রু সংবরণ করতে পারলাম না। এভাবে দুঃখ বেদনায় বর্ণিত হয়ে 'এই পথে আলো জ্বলে' উপন্যাস। পাঠ সমালোচনা ও মন্তব্যঃ বঙ্গবন্ধুর কারাগারের দিনলিপি। ত্রিকালদর্শী ব্যাঙ্গমা-ব্যাঙ্গমী একে অপরকে বলছে সেই কাহিনী। দেশের প্রতি, মানুষের প্রতি শেখ মুজিবের ভালোবাসা, ভালোবাসার টানে মিছিলে শামিল হওয়ার ঘটনা এবং কারাগারে শেখ মুজিবুর মনবল যেভাবে নিক্ষুত ও সূঙখানো ও সাবলীল ভাবে লেখক, তুলে ধরছেন তা সত্যি প্রশংসানীয় আমাদের করুণ ইতিহাসের বইয়ের প্রতিটি লাইন যেন ফিরিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলো কল্পনায়। আমি যেন তাদের সামনেই বসে আছি। আমার বিশ্বাস প্রতিটি পাঠকের হৃদয় ছুঁয়ে যাবে এই বই, বইয়ের চরিত্রে আবেগপ্রবণ হয়ে যাবে সবাই। বইয়ের নামঃ এই পথে আলো জ্বলে লেখকঃ আনিসুল হক প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারী ২০১৯ প্রকাশনীঃ প্রথমা।
Thriller
1
The book has a very enticing start, the author successfully kept me engaged till the end. A good start followed by stories of the characters to give a background which seemed quite long and unnecessary at times, otherwise the flow of the story was well maintained. We don't have many fantasy book written in Bangladesh background and characters having Bangla names, Arkon definitely is one of them. While readers may notice similarities with few other movies, books and sort but it never diluted the essence of the story. Moreover the author did acknowledged of being encouraged from works of his favorite authors, so no hard feelings on that. The finishing seemed to be a hurried effort, so we readers can surely demand a sequel from the author.
Thriller
1
ভাষা আন্দোলন বঙ্গবন্ধু শুরু করেন ১৯৪৮ সালে । ১১ই মার্চ বাংলা ভাষাকে রাষ্ট্রভাষার মর্যাদা দেয়ার দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন এবং গ্রেফতার হন । ১৫ই মার্চ তিনি মুক্তি পান। ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সমগ্ৰ দেশ সফর শুরু করেন। জনমত সৃষ্টি করতে থাকেন। প্রতি জেলায় সংগ্রাম পরিষদ গড়ে তোলেন । ১৯৪৮ সালের ১১ই সেপ্টেম্বর তৎকালীন সরকার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবকে ফরিদপুরে গ্রেফতার করে। ১৯৪৯ সালের ২১শে জানুয়ারি মুক্তি পান। মুক্তি পেয়েই আবার দেশব্যাপী জনমত সৃষ্টির জন্য সফর শুরু করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীদের দাবির প্রতি তিনি সমর্থন জানান এবং তাদের ন্যায্য দাবির পক্ষে আন্দোলনে অংশ নেন । সরকার ১৯৪৯ সালের ১৯শে এপ্রিল বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে গ্রেফতার করে । জুলাই মাসে তিনি মুক্তি পান । এইভাবে কয়েক দফা গ্রেফতার ও মুক্তির পর ১৯৪৯ সালের ১৪ই অক্টোবর আর্মানিটােলা ময়দানে জনসভা শেষে ভুখা মিছিল বের করেন। দরিদ্র মানুষের খাদ্যের দাবিতে ভুখা মিছিল করতে গেলে আওয়ামী লীগের সভাপতি মওলানা ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান গ্রেফতার হন । বর্তমান বইটার নাম ছোট বোন রেহানা রেখেছে-‘কারাগারের রোজনামচা’ । এতটা বছর বুকে আগলে রেখেছি যে অমূল্য সম্পদ-আজ তা তুলে দিলাম বাংলার জনগণের হাতে । ড. ফকরুল আলমের অনুবাদ করে দেওয়া ইংরেজি সংস্করণের কাজ এখনও চলছে। তার জীবনের এত কষ্ট ও ত্যাগের ফসল আজ স্বাধীন বাংলাদেশ । এ ডায়েরি পড়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের মানুষ তাদের স্বাধীনতার উৎস খুঁজে পাবে।
Political
3
বইয়ের নাম: “রাইফেল রোটি আওরাত” লেখক: আনোয়ার পাশা “অধ্যাপক আনোয়ার পাশার” রচিত 'রাইফেল রোটি আওরাত' মুক্তিযু্দ্ধভিত্তিক প্রথম উপন্যাস। কালজয়ী এই উপন্যাসটি রচিত হয়েছে ১৯৭১ সালের এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত। এই উপন্যাসে তৎকালীন সামাজিক-রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, পাকিস্তানী সৈন্যবাহিনী দ্বারা ২৫-মার্চের গণহত্যা, নির্বিচারে লুটপাট, অমানবিক পৈশাচিকতা, নারী নির্যাতনের ভয়াবহতা, সাহসী গণমানুষের যোদ্ধা-রূপ, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতিরোধ, স্বাধীনতার পক্ষে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা সবই উঠে এসেছে! পাকিস্তানি সৈন্যের বর্বর রূপের বহিঃপ্রকাশ ঘটে এই উপন্যাসের নামের মাঝেই। ‘রাইফেল রোটি আওরাত’ এই তিনটি শব্দের মাঝেই লুকিয়ে আছে এক রূঢ়-সত্য! রাইফেল রোটি আওরাত এর মমার্থ করলে দাড়ায়...রুটি খেয়ে গায়ের জোর বাড়াও! রাইফেল দিয়ে বাঙালী উৎখাত করো! আর আওরাত নিয়ে ফুর্তি করো! আর এই শব্দের এতই ভয়াবহতা যা প্রতিদিন তৈরি করেছিল বাঙ্গালী নিধনের এক মহা-উপন্যাস! ১৯৭১ সালের ২৫শে মার্চ পাক-বাহিনীর বর্বরোচিত হামলা রক্তাক্ত করে বাংলার ভূমি! অমানুষের দল নির্বিচারে চালায় নির্মম গণহত্যা! ওদের হাত থেকে রেহাই পায়নি নিস্পাপ শিশু থেকে শুরু করে বৃদ্ধ-যুবা কেউই!আর নারীরা তো ছিলো ভোগ্যপণ্য! আর তাইতো সম্মান বাঁচাতে হলের ছাদ থেকে একসাথে লাফিয়ে পড়ে আত্মাহুতি দেয় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল ছাত্রী! উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সুদীপ্ত শাহীন, যার দু’ চোখ যেন সাক্ষী হয়ে আছে অজস্র বাঙ্গালীর আত্মত্যাগের কাহিনীতে। তিনিও অন্য সবার মতোই তার পরিবারকে নিয়ে নিরাপত্তার আশায় ছুটে বেড়িয়েছেন ঢাকা শহরের এক প্রান্ত থেকে আরেক প্রান্তে। তার ও অনান্য কতিপয় চরিত্রের নানা ঘটনা-প্রবাহের মাঝেই এগিয়ে গেছে এই উপন্যাসটি! আর এদেশের কুলাঙ্গার রাজাকাররা পাকিস্তানীদের সাহায্য করে পরিস্থিতি আরো ভয়াবহ করে তোলে। শেষ পর্যন্ত যাদের সহায়তায় পাক-বাহিনীর হাতে প্রাণ হারায় এ দেশের সূর্য-সন্তানরা! আর আনোয়ার পাশা তাদেরই একজন! যে কিনা কলমের কালিতে রচনা করেছিলেন, দেশ স্বাধীনের নতুন এক স্বপ্ন! আর তাইতো রক্তের কালিতে লেখা হয়েছে তাঁর দীপ্ত উচ্চারণঃ “নতুন মানুষ, নতুন পরিচয় এবং নতুন একটি প্রভা। সে আর কতো দূরে। বেশি দূর হতে পারে না। মাত্র এই রাতটুকু তো। মা ভৈঃ। কেটে যাবে!”
War
5
অবশেষে মেরিন ইঞ্জিনিয়ার ছেলের সঙ্গে চিত্রার বিয়েটা ঠিক হয়েই গেল। ছেলেপক্ষ তিনবার মেয়ে দেখে গিয়ে আজ ফাইনাল ডিসিশান জানাল, আগামী বৃহস্পতিবার এনগেজমেন্ট। মেয়ের এনগেজমেন্টের চিন্তায় শায়লা বেগমের পাগলপ্রায় দশা। আর হবে নাই বা কেন, ছেলেপক্ষের অর্থ, বিত্ত, স্ট্যাটাসের তুলনায় তাদের অবস্থান তো কিছুই না। তার এই শ্যামলা মেয়েটির কপালে যে এত ভাল বিয়ে লেখা ছিল, সেটাই তার কাছে এক বিরাট বিস্ময়। বড় মেয়ের বিয়ের চিন্তার পাশাপাশি ছোট মেয়ে মীরার চিন্তাও তাকে কম ভোগাচ্ছে না। স্কুলপড়ুয়া এই মেয়েটি ইদানীং প্রায়ই নিচু গলায় টেলিফোনে কথা বলে। এই বয়সটা হল প্রেমে পড়ার বয়স, কঠিন নজরদারির মধ্যে না রাখলে পা পিছলাবার সম্ভাবনা। তাই শায়লা বেগম তার উকিলি জেরার মাধ্যমে বের করে ফেললেন মীরার পেটের কথা। সব শুনে যা মনে হচ্ছে, ভাড়াটিয়া নিজাম সাহেবের দূরসম্পর্কের চাকর টাইপের ভাই মজনুই মীরার ফোনালাপের নায়ক। সে পরিচয় গোপন করে নিজের জন্য লাইলী ঠিক করে ফেলেছে। মায়ের কথাটা এখন মীরার কাছেও বিশ্বাসযোগ্য বলে মনে হচ্ছে। চাকর শ্রেনীর একটা লোকের সাথে এতদিন ধরে প্রবল আবেগে কথাবার্তা চালিয়ে যাওয়ায় তার অস্বস্তির সীমা নেই। বাড়ির সবচেয়ে গুরুত্বহীন মানুষ শায়লা বেগমের স্বামী, রহমান সাহেব। তার অস্তিত্ব নিয়ে কারো কোন মাথাব্যথা নেই, নেই তার পছন্দ-অপছন্দেরও কোন মূল্য। তবে তার ছোটবোন ফরিদার কাছে তিনি পৃথিবীর সবচাইতে ভাল মানুষ। অভাবে পড়ে ফরিদার স্বভাবে চৌর্যবৃত্তি ঢুকে যাওয়ায় রহমান সাহেবের বাড়িতে ফরিদা অবাঞ্ছিত। তাইতো বোনের চরম দুঃসময়েও তাকে মাথা গোজার ঠাই দিতে রহমান সাহেব অপারগ। তার এই অপারগতার পরিণাম যে এতটা ভয়াবহ হবে তা কি আর তিনি জানতেন!!! :(
Fiction
0
প্রখ্যাত কথাসাহিত্যিক হুমায়ুন আহমেদের জনপ্রিয় চরিত্র মিসির আলীর এবারের চমক ”বাঘবন্দী মিসির আলী”। বরাবরের মতই মিসির আলী সমাধান করেছেন দুর্দান্ত রহস্যের।বইযের একটি প্রিয় অংশ-"মানসিকভাবে দুর্বল মানুষ ব্যর্থতা নিতে পারে না। মানসিকভাবে সবল মানুষের কাছে ব্যর্থতা কোনো ব্যাপার না। সে জানে সাফল্য এবং ব্যর্থতা দুই সহোদর বোন। এরা যে কোন মানুষের চলার পথে হাত ধরাধরি করে দাঁড়িয়ে থাকে। সাফল্য নামের বোনটি দেখতে খুব সুন্দর। তার পটলচেরা চোখ, সেই চোখের আছে জন্ম কাজল। তার মুখে প্রথম প্রভাতের রাঙা আলো ঝলমল করে। আর ব্যর্থতা নামের বোনটি কদাকার, মুখে বসন্তের দাগ, চোখে অল্প বয়সে ছানি পড়েছে। সবাই চাই রূপবতী বোনটির হাত ধরতে। কিন্তু তার হাত ধরার আগে কদাকার হাত ধরতে হবে এই সহজ সত্যটা বেশির ভাগ মানুষের মনে থাকে না। মানুষের মন যতই দুর্বল হয় ততই সে ঝুঁকতে থাকে রূপবতী বোনটির দিকে। এটা অতি অবশ্যই মানসিক জড়তার লক্ষণ।"/মিসির আলি চরিত্রটি এতোটাই পাঠক জনপ্রিয়তা পেয়েছে যে, অনেকেই তাঁকে রক্তমাংসের মানুষ ভাবতে শুরু করেছেন। হুমায়ূন আহমেদ প্রায়ই জিজ্ঞাসিত হন যে, মিসির আলি কি কোনো বাস্তব চরিত্রকে দেখে লেখা কিনা। এর নেতিবাচক উত্তর পেয়ে অনেকেই আবার মিসির আলি চরিত্রটির মধ্যে লেখকেরই ছায়া খুঁজে পান। এপ্রসঙ্গে স্বয়ং হুমায়ূন আহমেদই উত্তর করেন: “না, মিসির আলিকে আমি দেখিনি। অনেকে মনে করেন লেখক নিজেই হয়তো মিসির আলি। তাঁদেরকে বিনীতভাবে জানাচ্ছি- আমি মিসির আলি নই। আমি যুক্তির প্রাসাদ তৈরি করতে পারি না এবং আমি কখনও মিসির আলির মতো মনে করিনা প্রকৃতিতে কোনো রহস্য নেই। আমার কাছে সব সময় প্রকৃতিকে অসীম রহস্যময় বলে মনে হয়।“
Fiction
0
‘দ্য সুলতান’স হারেম’ কলিন ফ্যালকনার এর লেখা একটি ইতিহাসভিত্তিক উপন্যাস । ইংলিশ বংশোদ্ভুত এই অস্ট্রেলিয়ান লেখক ১৯৫৩ সালে ইংল্যান্ডে জন্মগ্রহন করেন । চাকরি জীবনে একটা ইন্সুরেন্স কোম্পানিতে কিছুদিন চাকরি করার পরে তিনি দেশ ভ্রমনে বের হন । এই ভ্রমন থেকেই উঠে এসেছে তার বইয়ের কাহিনী । ১৯৯৩ সালে দ্য সুলতান’স হারেম বইটি প্রকাশিত হয় যা তার লেখা প্রথম বই । বইটি বাংলা তে অনুবাদ করেছেন ইমতিয়াজ আজাদ । তার জন্ম ১৯৮৭ সালে কুষ্টিয়াতে । তার অনুবাদ করা প্রথম গ্রন্থ দ্য সুলতান’স হারেম । বইটি ২০১৬ সালের অগাস্ট মাসে আদী প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হয় । বইটির প্রকাশক নাফিসা বেগম এবং এর প্রচ্ছদ করেছেন সামিউল ইসলাম অনিক । বইটি ইতিহাস ভিত্তিক একটি বই । বইটি অনেক বড় কাহিনী নিয়ে হলেও অনুবাদে বইটিতে পরিমার্জিত করে প্রকাশ করা হয়েছে এমন ভাবে সংক্ষেপ করা হয়েছে যাতে কাহিনীতে কোনো ছেদ না আসে । উপন্যাস টি সুলতান সুলেমান এর । সুলতান সুলেমান এর রাজ্য পরিচালনা ও তার ভেতরের বিভিন্ন শত্রুতা , বিশ্বাসঘাতকতা ইত্যাদি বলা হয় । সুলতান সুলেমান এর প্রথম স্ত্রী গুলবাহার । গুলবাহার ও অনেক গুরুত্বপুর্ন একটি চরিত্র । প্রথম স্ত্রী হিসেবে তার রাজমাতা হওয়ার কথা ছিল , সে কি পেরেছিল? হুররেম সামান্য অবস্থান থেকে নিজের বুদ্ধি খাটিয়ে কিভাবে একটু একটু করে নিজের অবস্থান তৈরী করে তা জানা যাবে উপন্যাস টি পড়লে । এছাড়াও রাজমাতা হাফিসা সুলতান, ইব্রাহিম , আব্বাস এই চরিত্র গুলো উপন্যাসের অনেক গুরুত্বপুর্ন চরিত্র । বইটি প্রেম , প্রেম , ঘৃনা, ইর্ষা আর ষড়যন্ত্রের অসামান্য একটি উপন্যাস, পড়লে যে কোনো পাঠকেরই ভালো লাগবে ।
War
5
"দ্য পাওয়ার অব পজিটিভ থিংকিং" এই গ্রন্থটি রচিত হয়েছে সেইসব পদ্ধতি ও উদাহরণ স্থাপনের জন্য যা আপনাকে পরামর্শ দেবে যে কোন কাজেই হারতে নেই আর মানসিক শান্তি, সুস্বাস্থ্য ও অদম্য শক্তি বজায় রাখুন। সংক্ষেপে বলা যায়, আপনার জীবন পরিপূর্ণ হতে পারে আনন্দ ও সন্তুষ্টি দ্বারা। এ বিষয়ে আমার কোন সন্দেহ নেই কারণ আমি অসংখ্য মানুষকে দেখেছি যারা খুব সহজ পদ্ধতি শিখে ও প্রয়োগ করে তাদের জীবনে এনেছে ব্যাপক সম্ভাবনা। এই দাবীগুলো দৃশ্যত : অযৌক্তিক মনে হলেও মূলত : এর মূলভিত্তি হল প্রকৃত অভিজ্ঞতার সরল আলোকপাত। প্রতিনিয়ত অসংখ্য মানুষ নিত্যদিনের সমস্যায় জর্জরিত থাকে। তারা কষ্ট পায়, এমনকি দিনের পর দিন এটাও ভাবতে থাকে যে কি ভেবেছে আর জীবন তাদের কি দিয়েছে। ওভাবে ভাবতে গেলে জীবনের কিছু ‘ব্যাঘাত’ আছে বৈকি, কিন্তু সেসব বিঘœকে নিয়ন্ত্রণের শক্তিও পদ্ধতিও রয়েছে। এটি কেবল করুণাই নয় যে মানুষ জীবনের নানারকম সমস্যা, উদ্বেগ আর সংঘাতের কাছে হার মানে, এটি সম্পূর্ণ অপ্রয়োজনীয়। এসব বক্তব্যের অর্থ এই নয় যে পৃথিবীর কষ্ট আর যন্ত্রণাকে আমি তাচ্ছিল্য করছি বা ছোট করে দেখছি, তবে সেসবকে আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ দেই না আমি। সমস্যা যখন চূড়ান্ত হয়, তখন আপনি তাকে গুরুত্ব দিয়ে ভাবনার রূপরেখা তৈরি করতে পারেন। যে সকল বাধা আপনাকে হারাতে পারে। সেসব কিছুর ঊর্ধ্বে উঠে আপনি নিজেকে বাঁচাতে পারেন মন থেকে দুশ্চিন্তা তাড়ানোর পদ্ধতি শিখে, মানসিক দাসত্বকে অতিক্রম করে আর আত্মিক শক্তিকে বৃদ্ধি করে। ধাপে ধাপে আমি জানাতে চাই যে বাধা যেন আপনার সুখ-স্বাচ্ছন্দ্যকে নষ্ট করতে না পারে। একমাত্র আপনি নিজে চাইলেই হারবেন। আর এই গ্রন্থ আপনাকে শেখাবে কিভাবে আপনি হারতে ‘চাইবেন’ না। এই গ্রন্থের উদ্দেশ্য খুব সহজ-সরল। কোন ধরনের সাহিত্যিক উৎকর্ষতা বা অস্বাভাবিক বিশিষ্টতার ভান এতে নেই। এটি খুব সাধারণ, সরল, আত্মোন্নয়নমূলক একটি সারগ্রন্থ। এটি রচিত হয়েছে পাঠকদের সাহায্য করার জন্য যাতে তারা অর্জন করতে পারেন সুখী, পরিতৃপ্ত ও সমৃদ্ধ একটি জীবন। আমি সম্পূর্ণরূপে আর প্রবল উৎসাহের সাথে বিশ্বাস করি যে, সোচ্চার আর কার্যকরী পদক্ষেপ স্থান আর সময়োপযোগী গ্রহণ করলে মানুষ জয়লাভ করতে পারে। আমার উদ্দেশ্য হল এই গ্রন্থে সেইসব পদক্ষেপকে যুক্তিসঙ্গত, সরল ও বোধগম্য করে উপস্থাপন করা যাতে পাঠক সেসবের ব্যবহারিক প্রয়োগের মাধ্যমে স্রষ্টার সাহায্যে নিজের পছন্দমতো জীবন গড়ে তুলতে পারে।
Motivational
6
বইটি পড়ে ভাল লাগলো, লেখককে ধন্যবাদ।
Fiction
0
'হিমু'কে নিয়ে লেখা উপন্যাসগুলো যে খুবই হালকা গোছের, সেখানে কিছু কাঁচা কথা ছাড়া আর কিছু থাকে না, কোন কাহিনী থাকে না - এধরণের বহু অভিযোগ আজ পর্যন্ত শুনেছি। কিন্তু দুঃখের কথা, যাদের মুখ থেকে এ ধরণের স্টেটমেন্ট বেরিয়েছে তারা জীবনে কোনদিন হিমু বিষয়ক একটা বই পড়ে দেখেন নাই। যদি তারা হিমুকে নিয়ে লেখা কোন উপন্যাস পড়তেন তাহলে বুঝতেন, হুমায়ুন আহমেদ তা%র লেখক জীবনের সবচেয়ে সাহসী কাজগুলো করেছেন হিমুকে নিয়ে লেখা উপন্যাস সমূহের ভেতর। আর দশটা সাধারণ উপন্যাসে যে ধরণের কথাবার্তার উল্লেখ থাকলে নিঃসন্দেহে লেখককে তীব্র সমালোচনায় পড়তে হত, সেইসব কথাই অবলীলায় তিনি হিমুর মুখ থেকে বলিয়েছেন। রূপক ভাবে অসংখ্য বিতর্কিত ঘটনাকে তিনি উপস্থাপন করেছেন এই সিরিজের বইগুলোর মাধ্যমেই। কিন্তু সবচেয়ে ভয়াবহ কথাগুলো লেখক লিখেছেন হিমুকে নিয়ে লেখা দুইটি উপন্যাসে। সেই উপন্যাস দুটির একটি হল 'হিমুর নীল জোছনা'। অন্যটি 'হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম'। এই দুইটি উপন্যাসে লেখক সরাসরিভাবে আক্রমন করেছেন দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি, রাজনৈতিক দল আর রাজনৈতিক নেতাদের। 'হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম' উপন্যাসটির পটভূমি ছিল নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বেগবান হওয়া এরশাদ বিরোধী আন্দোলন। আর 'হিমুর নীল জোছনা' বইয়ের পটভূমি ২০০৮ সালের নির্বাচন পরবর্তি সময়ে আওয়ামী সরকারের শাসনামল। 'হিমুর নীল জোছনা' বইটিতে একের পর এক বোমা ফাটিয়েছেন লেখক। কখনো তিনি ছাত্র রাজনীতির নামে রাজনীতি দলগুলো দেশের ছাত্রসমাজকে কিভাবে অনৈতিকতার চূড়ান্তে পৌঁছে দিচ্ছে তা তুলে ধরেছেন আবার কখনো তিনি ক্ষমতা দখলে মরিয়া রাজনীতিকদের বিচিত্র আচরণকে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে সরকারি দলের সাথে ঘটা যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনাকেই আখ্যা দেয়া হয় বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র হিসেবে আবার ছাত্রলীগের কেউ অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হলে সরকার মহল দাবি করে অপরাধী মূলত শিবিরের লোক, ছাত্রলীগের সর্বনাশ করতে গোপনে দলে ঢুকেছে। রাজনৈতিক দলগুলো 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবির রহমান' আর 'মেজর জিয়াউর রহমান' এই দুইটি নামকে ব্যক্তি স্বার্থে বানিজ্যিকীকরণ করে চলেছে সেটাও দেখানো হয়েছে। উঠে এসেছে হলুদ সাংবাদিকতার চিত্র, পুলিশের ঘুষ খেয়ে অপরাধিকে ছেড়ে দেয়ার চিত্র। নির্দোষ ব্যক্তিদের জেলে পুরে বিখ্যাত সব মামলার আসামি বানিয়ে পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কিভাবে নিজেদের আসল দায়িত্ব থেকে সরে আসছে সেটাও দেখানো হয়েছে। আর এত সবের মাঝখানে যেকোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া কতটা চমকপ্রদ হয়, সেটা তো দেখানো হয়েছেই! এই বইয়ে সবচেয়ে বড় বোমাটি লেখক ফাটিয়েছেন হিমুর কন্ঠকে কাজে লাগিয়ে প্রশ্ন তোলার মাধ্যমে যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারের সময় ছাত্রলীগের ভূমিকা কি ছিল যে তারা নিজেদেরকে দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ বলে দাবি করে। একজন সাহিত্যিক হিসেবে ক্ষমতাবানদের দিকে আঙ্গুল তোলা যে কতটা ঝুকিপূর্ণ তা লেখক জানতেন এবং এ জন্য এই বইয়ের ভূমিকায় লেখক সরাসরি এই বই লেখার প্রেক্ষিতে নিজের কি পরিণতি হতে পারে সে বিষয়ে শংকাও প্রকাশ করেন। হুমায়ুন আহমেদ তার লেখক জীবনে আড়াইশ'র বেশি বই লিখেছেন। অনেক বইয়ের বিষয়বস্তুর সাথে প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতির যোগাযোগ ছিল। কিন্তু সেসব স্থানেও লেখককে দেখা গেছে দুইদিক ব্যালান্স করে কথা বলতে। কিন্তু নিজের জীবনের একেবারে শেষ প্রান্তে, হিমু সিরিজের ২১তম বইতে এসে লেখক নিঃসংকোচে যেভাবে দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা ও সরকারকে নিয়ে স্যাটায়ার করেছেন, তা তাঁর আগে কোন লেখককে ফিকশনধর্মী লেখার মাধ্যমে করতে দেখিনি। এ দিক থেকে ব্যাপারটা সত্যিই অভূতপূর্ব। ক্ষমতাবানদের নিয়ে লেখক কি কঠিন কঠিন সব রসিকতা করেছেন, তাঁর সাক্ষী হতে হলে 'হিমুর নীল জোছনা' বইটি পড়তেই হবে। হিমু এই বইতে দেশের প্রতিটি সচেতন ও নিরপেক্ষ মানুষের কন্ঠস্বর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এ এমনই এক বই যা শুধু হিমু ভক্তদেরই না বরং দেশ ও সমাজ সচেতন সকল পাঠকেরই দারুণ ভালো লাগবে। এত বিস্তারিতভাবে লেখকের দেশ ও দেশের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে ভাবনার চিত্র অন্য কোন বইতে যে ফুটে ওঠে নাই তা বলাই বাহুল্য।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-নিমন্ত্রণ লেখক-তসলিমা নাসরিন ধরন- উপন্যাস পৃষ্ঠা-৬৪ মুল্য-৪৫ দিব্য প্রকাশন ৬৪ পৃষ্ঠার এই বই, আমাকে দিয়েছে পূর্ণ হতাশা। তাই বলেকি সবাই এক! তা নইলে পত্রিকায় খবর গুলো ছাপে কি করে! মানুষ কি এতোই বর্বর হয়! মানুষ কি পশুর মতোই হিংস্র হয় সামান্য কয়েক মিনিটের এক জৈবিক চাহিদায়! হয়ই তো, বাস্তব ত প্রায়ই আমাকে তা দেখাচ্ছে। এমনকি এটাই ধ্রুব সত্যি। কতিপয় পুরুষ মানুষের কাছে দন্ডের চাহিদা অনেক। আর তাই তার লালসা থেকে রেহায় মিলে না অনেক শিশু বয়েসী মেয়েও। আমাদের পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারীরা কতোটা নিরাপদ তা জানার জন্য পত্রিকার দুটো পৃষ্ঠা উল্টালেই হয়। তার জন্য ততোটা ভিতরে যেতে হয় না। আরো আশ্চর্যের কথা হলো, নারীরা যাকে আশ্রয় ভাবে, সেখানেই কি সে খুব নিরাপদ থাকে? যদি থাকেই তবে আমরা এসব নিউজ পড়ি কেন, যেখানে লেখা থাকে, চাচার, মামা, দাদার দ্বারা শিশু ধর্ষিত। বলতে লজ্জা লাগছে, এমনও নিউজ পড়তে হয় যা দেখলে কিছু দুপায়ে পুরুষ মানুষের দিকে তাকাতেও লজ্জা হয়। এদের মুখ গুলো মানুষের মতো, কিন্তু আড়ালে হায়েনা। একটা ভালবাসা হুট তৈরি হয় না। এটাতে থাকে বিশ্বাস, আশ্বাস, সময়, এমন কি দায়বদ্ধতা। কোন প্রেমিক কে কোন প্রেমিকাই ধর্ষক ভাবতে পারে না। বুঝবে কি করে, ধর্ষক তো মানুষের মতোই দেখতে। অথচ এই ভালবাসায় মুড়ানো মানুষটাও হঠাৎ হয়ে উঠে হিংস্র প্রাণী। তা শুধু সময়ের ব্যাপার। এবার কথা হলো, নিজেকে তো আর কারো আশ্রয়ে রক্ষা করা সম্ভব হয় না। কেন না রক্ষকই হয়ে উঠে ভক্ষক। সে ক্ষেত্রে মেয়েদের নিরাপত্তার কথা নিজেদের ভাবতে হয়। সচেতন হতে হয় নিজে থেকেই। তা ছাড়া একটা সময় পর্যন্ত বাবা মায়ের উচিৎ তার নিজেদের মেয়ে সন্তানে চোখে চোখে রাখা। তাদের কে সচেতন হতে উৎসাহ দেওয়া। কেন না তারা যদি মেয়েদের সচেতন না করেন তাতে দেখা যাবে নিজে থেকেই নিজেদের অবনতি ডেকে এনেছে। সে সুত্র থেকে আমি বলবো সাবধানতার কোন মার নেই। তসলিমা নাসরিনের বই নিমন্ত্রণ। এটা একটা নোংরা বাস্তবতার ম্যাসেজ। এবং এই ম্যাসেজ টা সকল মেয়েরই জানা উচিৎ।কেন না মেয়েরা নিজেদের দূর্দশার জন্য অনেকাংশে দায়ী। এক হাতে কখনই তালি বাজে না। উগ্র মনমানসিকতা, আর উগ্র চলাফেরা অনেক সময় কাল হয়ে দাড়ায়। বই সম্পর্কে বলতে হলে আমি বলব, সত্যিই অসাধারণ শিক্ষনীয় একটি বই। এতোটা পুরুষ ঘেসা হতে নেই মেয়ে। তারপরও পুরুষে দোষ দেওয়া যেতেই পারে। আমি মানি, একটা পুরুষতান্ত্রিক সমাজে নারী হিসেবে আমরা সব সময় নির্যতিত। হক তা ছলে, কখনো বলে, কখনো কৌশলে। আর এ থেকেই প্রতীয় মান হয় তাদের উপর নির্ভর করে নয়, তাদের থেকে সচেতন হয়ে থাকতেই হয় । বিশ্বাস টা না হয় কিছুটা কমই থাকুক। কেন না রূপধারী পুরুষ গুলো কখনো হায়েনা তে পরিনত হবে, সেটা বোধহয় টেরই পাওয়া যাবে না। তার থেকে কিছুটা দুরুত্ব নিয়ে চলাটাই বোধকরি বেশ ভালো। তাই বলে বিদ্বেষীও নয়। তসলিমা নাসরিন বাংলাদেশের একজন সাহিত্যিক ও চিকিৎসক। বিংশ শতাব্দীর আশির দশকে একজন উদীয়মান কবি হিসেবে সাহিত্যজগতে প্রবেশ করে। এই শতকের শেষের দিকে নারীবাদী ও ধর্মীয় সমালোচনামূলক রচনার কারণে আন্তর্জাতিক খ্যাতি লাভ করেন। তিনি তাঁর রচনা ও ভাষণের মাধ্যমে লিঙ্গসমতা, মুক্তচিন্তা, ধর্মনিরপেক্ষ মানবতাবাদ ও মানবাধিকারের প্রচার করায় ধর্মীয় মৌলবাদী গোষ্ঠীদের রোষানলে পড়েন। তসলিমা নাসরিনের বই পড়লে মেয়েরা সাহসী হয়ে উঠবে, প্রতিবাদ করা শিখবে। নারীবাদী হয়ে উঠবে। এই চিন্তা ধারাটা সব ক্ষেত্রেই ঠিক নয়। খুব খারাপ ভাষায় খুব নোংরা সত্য গুলো তুলে আনা খুব বেশি অন্যায় নয়। সব পুরুষ এক নয়। কিন্তু হাতে গুনা দুটো পুরুষেই যথেষ্ট নারীদের বিশ্বাস আর ভরসার ভিত নড়াতে। তসলিমা নাসরিনের বই নিমন্ত্রণ এই কনসেপ্ট থেকেই লেখা। সচেতনতার জন্য অবশ্যই যে কোন কিছুই আমরা গ্রহন করতে পারি। যদিও হয় তা নিষিদ্ধ। শীলা নামের একটি কালো মেয়ের একদিনের নিমন্ত্রণের বর্ণনা দেওয়া হয়েছে গল্পের পরিনতিতে। তা কতোটা উপাদেয় ছিলো তা পাঠকই বিচার করতে পারবেন। আর অন্যায়ের প্রতিবাদ তো সকলকেই করা উচিৎ। হোক সে পুরুষ বা নারী। ‘নিমন্ত্রণ’ একটি উপন্যাস। এটা শুধু মাত্র উপন্যাস নয় একটা বিশ্বাসের দলিল। সে দলিল রক্ত রঙে রঞ্জিত। যেখানে পায়ের গোড়ালি অব্দি ডুবে থাকে টকটকে লাল রক্ত রঙে। রেটিং৫/৫ রকমারি লিংক https://www.rokomari.com/book/39335/নিমন্ত্রণ
Fiction
0
নামঃ পাগলা সাহেবের কবর লেখকঃ শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় পৃষ্ঠাঃ ৯২ মুল্যঃ ১৮০টাকা প্রকাশকালঃ ১৯৮৭ ধরনঃ রহস্য,থ্রিলার,অ্যাডভেঞ্চার,হাস্যরস / অদ্ভুতুড়ে সিরিজ প্রচ্ছদঃদেবাশিষ দেব প্রকাশনীঃআনন্দ পাবলিশার্স কাহিনীঃ মোতিগঞ্জের স্কুলের সুনাম বখাটে আর অমনোযোগী ছেলেদের মতি ফেরাতে। হরিবন্ধুর নিয়তি হরিবন্ধু কে টেনে নিয়ে গিয়েছিলো সেই স্কুলে। বেচারা হরিবন্ধু, নানা রকম গুন যেমন স্কুল পালানো, গাছে চড়া,খাওয়া , ঘুমানো এসব ভাল ভাল গুন থাকার পরও তিন তিন বার ক্লাস সেভেনে ফেইল করল। ফলস্বরূপ স্কুল থেকে টিসি। গগন ডাক্তারের এই ছেলে কে সে খুব হতাশ। বিচক্ষণ দুখিরামবাবুর পরামর্শেই হরি মোতিগঞ্জের স্কুলে ভর্তি হল। ভারী সুন্দর আর স্বাস্থ্যকর জায়গা সেটি। সেই স্কুলে গুন্ডা-পান্ডার সংখ্যা কম নয়।কিন্তু গোপাল নামে এক ছেলেকে বন্ধু হিসেবে পেল হরি। এদিকে সেই এলাকায় এক ঘোড়ায় চড়া পাগলা সাহেব আছেন, তাকে সবাই আবার দেখতেও পায়না। আবার , পটল দাসের মত পাক্কা চোর ও আছে, আপনার মাথার নিচ থেকে বালিশ-বিছানা আপনার অজান্তে হাপিস করে দিতে পারে। আপনি টেরও পাবেন না। একদিন কারা যেন গোপাল কে মেরে আহত করে ফেলে। গোপালের কথায় জানা যায় ওরা খুঁজে বেড়াচ্ছে পাগলা সাহেবের কবর। সেই কবর কোথায় কেউ জানেনা। সেই কবরে শায়িত পাগলা সাহেবের গলায় আছে নাকি লক্ষ লক্ষ টাকা মূল্যের একটা ক্রস। সেই ক্রস আছে পাগলা সাহেবের কফিনে। কিন্তু ঘোড়ায় চড়ে যে ঘোরে সে পাগলা সাহেব হলে পাগলা সাহেবের কবর কোত্থেকে আসল?? গোপাল,পটল দাস, হরি, টুবলু এরা কি জড়িয়ে পড়ছে ভয়ানক কোন জালে? কিভাবে বের হবে এরা? আর ধুমধাম করে গোপাল আর হরির উপরের আক্রমণ থেকে নিজেদের বাঁচাবে কি করে?? আর পাগলা সাহেবের কবর? সন্ধান কি পাওয়া যাবে তার নাকি এটা স্রেফ এক গুজব??? পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ অদ্ভুতুড়ে সিরিজের আরো একটা গল্প। বাকী সব গল্পের মত রহস্য, থ্রিলার আর সাসপেন্সে ভরা। শেষ পর্যন্ত না পড়লে বোঝা যাবে না আসলে কি ঘটছে,ঘটবে। হাসির মধ্যে দিয়ে যে থ্রিলিং এক্সপেরিয়েন্স দেয়া যায় সেটা এই সিরিজ না পড়লে বোঝা যেত না। দেরী না করে এখনি পড়ে ফেলুন। রকমারিঃ https://www.rokomari.com/book/42841/পাগলা-সাহেবের-কবর
Thriller
1
আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আমেরিকান লেখক ক্লাইভ কাসলার’ এর দূর্দান্ত থ্রিলার “ট্রেজার ।” বইটি শুরু হয় ইতিহাসের ফ্ল্যাশব্যাক দিয়ে । সম্রাট আলেকজান্ডারের মৃত্যুর পর মিশরের রাজা হন টলেমী । তৈরী করেন আলেকজান্দ্রিয়া শহর । বিশাল এক মিউজিয়াম এবং লাইব্রেরী গড়ে তোলেন তিনি আলেকজান্দ্রিয়ায় । তখনকার বিশ্বের সমগ্র জ্ঞ্যান সংগৃহীত হয় এই লাইব্রেরীতে । তিনশ একানব্বই খ্রিষ্টাব্দে সম্রাট থিয়োডোসিয়াসের নির্দেশে ধ্বংস করে ফেলা হয় লাইব্রেরী । তখন আলেকজান্দ্রিয়ার এক সম্ভ্রান্ত ব্যক্তি ভেনাটর লুকিয়ে বেশ কিছু জাহাজে করে লাইব্রেরীর কিছু অংশ সরিয়ে নেন এবং লুকিয়ে রাখেন মাটির নিচে কোন এক অজানা স্থানে । গ্রীনল্যান্ডের সাগরতলে ভেনাটরের সেই জাহাজগুলোর একটি খুঁজে পায় যুক্তরাষ্ট্রের “নুমা”র অনুসন্ধানী জাহাজ । বিস্তারিত অনুসন্ধানে, জাহাজের লগ থেকে তারা জানতে পারেন প্রাচীন লাইব্রেরী রক্ষায় ভেনাটরের প্রচেষ্টার কথা । সাথে লুকিয়ে রাখার জায়গার একটা ম্যাপ থাকলেও, সেটা কোন দেশে বা মহাদেশে তার কোন উল্লেখ ছিলনা । লুকিয়ে রাখা লাইব্রেরীতে পাওয়া যেতে পারে বিভিন্ন তেল বা খনিজ পদার্থের প্রাপ্তিস্থলের কথা, যা বর্তমান পৃথিবীর ক্ষমতার মেরুকরণকে পালটে দিতে পারে । কিংবা তখনকার পৃথিবীর বিভিন্ন প্রাচীন তথ্য, যা ধর্ম থেকে শুরু করে পৃথিবীর আরও অনেক প্রচলিত জ্ঞ্যান ও বিশ্বাসে তুমুল আলোড়ন তুলতে পারে । তাই এই লাইব্রেরী হয়ে পড়ে ক্ষমতাবান রাষ্ট্রগুলোর কাছে গুরুত্বপূর্ন । শুরু হয় অনুসন্ধান । এদিকে মিশর এবং মেক্সিকোতে মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে ধর্মীয় মৌলবাদ । মিশরের মৌলবাদী নেতা “আখমত ইয়াজিদ” ধর্মীয় উম্মাদনাকে কাজে লাগিয়ে মিশরের ক্ষমতা দখল করে নিতে চায় এবং লক্ষ্য অর্জনে মিশরের প্রেসিডেন্ট নাদাভ হাসান এবং মিশরের জনপ্রিয় নেত্রী ও জাতিসংঘের মহাসচিব হেলা কামিল কে খুন করতে চায় সে । অন্যদিকে মেক্সিকোতে প্রাচীন অ্যাযটেক ধর্মকে উপজীব্য করে আবির্ভুত ধর্মীয় নেতা টপিটজিন ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে ধর্মীয় উম্মাদনা ছড়িয়ে দেয় মেক্সিকোয় । সীমান্তে লাখ লাখ লোকের সমাবেশ ঘটিয়ে যুক্তরাষ্ট্রে অনুপ্রবেশ করে নিউ মেক্সিকো সহ যুক্তরাষ্ট্রের বিশাল অংশ দখল করে নেয়া তার লক্ষ্য । উভয় দেশের সমস্যায় জড়িয়ে পড়ে যুক্তরাষ্ট্র । হেলা কামিলকে গুপ্তহত্যার জন্য আততায়ী’র মাধ্যমে মরীয়া হয়ে একের পর এক আঘাত হানে আখমত ইয়াজিদ । অনেক গুলো প্রচেষ্টা ব্যার্থ হবার পর উরুগুয়েতে বহুজাতিক এক মহা সম্মেলন থেকে একটা প্রমোদ তরী হাইজ্যাক করায় আখমত ইয়াজিদ, যেখানে মিশরের প্রেসিডেন্ট হাসান ও হেলা কামিল সহ যুক্তরাষ্ট্রের একজন সিনেটর অবস্থান করছিলেন । হাইজ্যাকের কিছুক্ষন পর থেকে আটলান্টিকে সম্পূর্ন উধাও হয়ে যায় জাহাজটি । অনুসন্ধানী জাহাজ, প্লেন এমনকি স্যাটেলাইট দিয়ে তন্ন তন্ন করে গোটা আটলান্টিক চষে ফেলেও পাওয়া যায় না জাহাজটিকে । এমতাবস্থায় আখমত ইয়াজিদ বিশ্ব সম্প্রদায়ের কাছে ঘোষণা দেয়, প্রমোদ তরী ধ্বংস হয়নি এবং নিজের জীবন বিপন্ন করেও আততায়ী’র সাথে যোগাযোগ করে সবাইকে মুক্ত করার চেষ্টা করবে সে । রহস্য ঘনীভূত হয় । জাহাজটি কি সত্যি নিরাপদে আছে ? তাহলে কোনভাবেই আটলান্টিকে তার খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না কেন ? কিভাবে গোটা একটা জাহাজকে সমুদ্রের বুকে লুকিয়ে রেখেছে আততায়ীরা ? হেলা কামিল আর প্রেসিডেন্ট কে কি উদ্ধার করা যাবে ? নাকি মিশরে জেঁকে বসবে মৌলবাদ ? টপিটজিনেরই বা কি হবে ? যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্তে পাঁচ লাখ লোকের অনুপ্রবেশ রক্তপাত ছাড়া কিভাবে ঠেকানো যাবে ? আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরী’র কি খোঁজ পাওয়া যাবে ? পাওয়া গেলে সেসব সম্পদের মালিকানা নিয়ে সৃষ্ট জটিলতার সমাধান কিভাবে হবে ? এমনিসব জটিল সমস্যাকে ঘিরে আবর্তিত হয় ট্রেজার এর কাহিনী । ঘটনার বিশাল বিস্তৃতি এবং অনেক চরিত্রের সমাবেশ স্বত্তেও কাহিনী এগিয়ে গিয়েছে সাবলীল ভাবে । আলেকজান্দ্রিয়া লাইব্রেরী খুঁজে বের করার চেষ্টা এবং ছিনতাই হয়ে যাওয়া জাহাজটির উদ্ধার প্রচেষ্টা – উভয় ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় চরিত্র ডার্ক পিট এর উপস্থিতির মাধ্যমে ঘটনা দুটির সংযোগ ঘটানো হয়েছে । প্রতিটি চরিত্রের সঠিক মাত্রায় উপস্থিতি, প্রয়োজনীয় বর্ণনা ও সমন্বয় করা হয়েছে সুন্দর ভাবে । পড়তে গিয়ে কোথাও হোচট খেতে হয় না । ব্যক্তিজীবনে লেখক ক্লাইভ কাসলার ন্যুমা’র (National Underwater and Marine Agency) প্রতিষ্ঠাতা এবং সাবেক চেয়ারম্যান । তার পেশাগত জীবনের অভিজ্ঞতা দিয়ে তিনি বইটির অনেক খুটিনাটি ব্যপারগুলোকে করে তুলেছেন বিশ্বাসযোগ্য । বইটি প্রকাশ করেছে “বাতিঘর” । পৃষ্ঠা ৪১৪ এবং মূল্য ৩৫০ টাকা । অপেক্ষাকৃত স্বল্পমূল্যে বিশ্বসাহিত্যের অনুবাদগুলো বাঙ্গালী পাঠকের হাতে তুলে দেয়ার বাতিঘর প্রকাশনীর যে প্রচেষ্টা, তা প্রশংসনীয় । বইটি অনুবাদ করেছেন “রিভার গড”এর অনুবাদ খ্যাত মখদুম আহমেদ । অনুবাদের মান চমতকার । সবশেষে বলতে হয় উপভোগ্য, সাবলীল, একটি গতিময় অ্যাকশন-থ্রিলার উপন্যাস ট্রেজার । রোমাঞ্চপ্রিয় পাঠকের জন্য অবশ্যপাঠ্য ।
Thriller
1
Mohaiminul Waheed Ayon ‎বইপোকাদের আড্ডাখানা (Boipokader Addakhana) #রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা #রিভিউ - [২১] বইয়ের নাম - নীল অপরাজিতা লেখক - হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশক - মাওলা ব্রাদার্স প্রকাশকাল - ২০১৫ সাল (চতুর্থ) মুল্য - ১২০ টাকা (রকমারি) পৃষ্ঠা সংখ্যা - ৭০ পৃষ্ঠা রিভিউ - "নীল অপরাজিতা" বইটা লেখা হয়েছে একজন লেখককে নিয়ে। নাম শওকত। শওকত নামক লেখকের জীবনের একটা অংশ তুলে ধরা হয়েছে বইটিতে। হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম বইটাতে একটা ভালোবাসার থিওরি আছে। সেরকম একটা থিওরি এই বইটাতেও রয়েছে। নীলপদ্ম থিওরির মতো এই থিওরিটাও অসাধারণ। শওকত সাহেব কিছুদিন শহর থেকে আলাদা শান্ত পরিবেশে থাকার জন্য ময়মনসিংহ শহর থেকে চল্লিশ-পয়তাল্লিশ মাইল দুরে ঠাকরোকোনা গ্রামে এসেছেন। গ্রামটার নাম শওকত সাহেবকে দিয়েছেন মহাকবি বজলুর রহমান। তাকে মহাকবি বলার কারণ বইটা পড়লেই বুঝতে পারবেন। মহাকবির বলা সেই সুন্দর গ্রামের কথা বিবেচনা করেই শওকত সাহেব এখানে এসেছেন। কিন্তু গ্রামে আসার পরে জানা গেলো তা সব কিছুই মিথ্যা। কি এমন বলেছিলো বজলুর রহমান শওকত সাহেব কে? শওকত সাহেবের দেখা শুনা যিনি করতেছেন তার নাম মোফাজ্জল করিম। তিনি ময়নাতলা হাইস্কুলের এ্যাসিসটেন্ট হেডমাস্টার্। মোফাজ্জল করিম সাহেবের চরিত্র টা বেশি কথা বলা লোকের মত। তিনি কে বিরক্ত হলো কে হলো না সেদিকে খেয়াল না করে শুধু কথা বলে যান। তিনি এক কথায় রাগহীন সরল মামুষ। শওকত সাহেব তাকে অপমান করলেও তিনি রাগ হন না। গল্পের নায়িকার নাম -পুষ্প। প্রথমে পুষ্পের সাথে খুব খারাপ ব্যবহার করলেও পরবর্তিতে পুষ্পের জন্য ভালো লাগা জন্মাতে থাকে শওকতের মনে। কিন্তু প্রকৃতি কখনো এবসলিউট বিউটির মুখোমুখি হয় না। প্রকৃতি মনে করে এটার জন্য মানুষ এখনো তৈরী হয় নি। বাকিটা বইটা পড়েই বুঝতে পারবেন। আশা করি বইটা আপনাদের ভালো লাগবে। বইটাতে আমার রেটিং - ৩/৫ ব্যক্তিগত মতামত - "নীল অপরাজিতা" বইটা ভালো লেগেছে। একটু বোরিং লাগলেও কিছু মজার ঘটনা বইটা ভালো লাগার কারণ। বইটাতে যেই প্রেমের থিওরি টা আছে সেটা অসাধারণ। হুমায়ূন আহমেদ স্যার প্রেমের থিওরি খুব ভালো লিখতে পারেন। হুমায়ূন আহমেদ স্যারকে ধন্যবাদ আমাদের সুন্দর একটা বই উপহার দেওয়ার জন্য।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই:- হাত কাটা রবিন লেখক:- মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রকাশনী:- মাওলা ব্রাদার্স পৃষ্ঠা সংখ্যা:- ৮৪ রকমারি মূল্য:- ১৪১ টাকা এই নিয়ে দুইটা উপন্যাসে দেখলাম গল্প কথক ইবু। জাফর স্যারের কিশোর উপন্যারের অসাধারন অ্যাডভ্যাঞ্চার গুলো আমার খুব ভালো লাগে। যখন শোনলাম প্রিয় এই লেখকের প্রথম কিশোর উপন্যাস "হাত কাটা রবিন" তখন থেকেই মনটা আনচান আনচান করছিলো বইটি পড়ার জন্য। গরিব মানুষ বলে যথারিতী পুরান বইয়ের দোকান থেকেই দশ টাকা দিয়ে কিনে নিলাম জাফর স্যারের "হাত কাটা রবিন" অবশেষে প্রতিক্ষা না করে পড়েও ফেললাম। প্রিয় মানুষের বই হাতে পেলে যা হয় আর কি এজন্যই এতো তাড়াহুড়া। যাইহোক এবার কাজের কথা বলি! ইবু, হীরা, নান্টু, মিশু এবং সলিল প্রথমে একটি হাসপাতাল খুলেছিলো। মাসুদের বাবা ডাক্তার হওয়াতে মাসুদই হয় এই হাসপাতালের ডাক্তার। মাসুদের বাবা বদলি হওয়াতে তারা সরকারি বাসা ছেড়ে চলে যায়। ডাক্তার না থাকায় হাসপাতালটাও উঠে গেল। এর পরে ওরা একটা ফুটবল ক্লাব খোলে। ফুটবল ক্লাবটিও এখন বন্ধ। ইবু দোয়া করছে মাসুদদের সরকারি বাসায় যে নতুন পরিবারটি এসেছে সেখানে যাতে ওদের বয়সি একজন থাকে। তাহলে ফুটবল ক্লাবটি আবার খোলা হবে। এখন ওদের একটা ডিটেকটিভ ক্লাব আছে। ইবুর দোয়া কবুল হয়ে গেলো। একটি ছেলে ঠিকই এলো কিন্তু সেই ছেলেটার একটা হাতের কনুইয়ের পরের অংশ নেই। কিন্তু ছেলেটি অত্যধীক সাহসী, মেজাজও বিশেষ ভালো নয়। হাত না থাকলেও তরতর করে গাছে উঠে বলে, উঠতে পারে। প্রথম দেখাতেই, "তোরা সব এ পাড়ার ছেলে? হ্যাঁ?" কোন সৌজন্য বোধ নেই ছেলেটার, ভদ্র ভাষা নেই, সোজা তুই বলে সম্বোধন সবাইকে। কিন্তু কিছুদিন পর বোঝা গেল ছেলেটার মন আসলে খুব ভাল। তাই সবাই প্রিয় বন্ধু হয়ে গেল খুব অল্প সময়ে। এমনকি রক্ত শপথ নিয়ে রবিন ওদের ক্লাবেও সদস্যও হয়ে গেল। তারপরই শুরু হয় তাদের দুরন্তপনা। ফুটবল ম্যাচ, রাতের বেলা অন্য ছেলেদের ভয় দেখানো, নদীতে সাঁতার কাটা। এর মধ্যেই টিপু নামে নতুন একটা ছেলে যোগ দেয় ওদের দলে। টিপু লেখাপড়ায় সন্তুষ্ট হয়ে তার বাবা তাকে একটি নৌকা উপহার দিয়েছে। এই নৌকা নিয়ে ঘুরে বেড়ানো এখন ওদের প্রধান কাজ। এর মধ্যেই একদিন ওরা ভয়ংকর একটা ডাকাতদলের খোঁজ পায়। সবাই মিলে সিদ্ধান্ত নেয় পিছু নিবে ডাকাতদের। ইবু, হীরা, নান্টু, মিশু, সলিল, রবিন এবং টিপু এই কজনইতো মানুষ তাঁরা। তাহলে কি করে এমন ভয়ংকর এক ডাকাত দলেকে প্রতিহত করবে??? কি হবে ওদের????? #পাঠ_প্রতিক্রিয়া:- মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের প্রথম কিশোর উপন্যাস হাত ককাটা রবিন। আর এখানেই তিনি প্রমাণ করেছেন তিনি বাংলার সেরা কিশোর উপন্যাস লেখক। একমাত্র স্যারই পারে আমাকে বারবার আমার শৈশবে নিয়ে যেতে। স্যারের কিশোর উপন্যাসের তুলনা কি দিয়ে করবো তা ভেবেই পাই না। আমি শহরের ছেলে হলেও আমার শৈশব কেটেছে টাঙ্গইলের একটি গ্রামে। খালাত ভাই ফারুক আর আমার একটি টিম ছিলো নাম দিয়েছিলাম বিচ্ছু বাহিনী। এই টিমের প্রধান লিডার ছিলাম আমি। মানুষের উপকার হয় এমন কাজ করার চেষ্টা করেছি সবসময়। দীঘিতে নৌকা চালানোর সময় একবার নৌকা ডুবেও গিয়েছিলো তখন যদি নজরুল ভাই এবং মামুন ভাই না থাকতো তাহলে অনেক বড় ক্ষতিও হতে পারতো। আরেকটা প্রধান কাজ ছিলো আমাদের পোকামাকর, প্রজাপ্রতি, ঘাসফড়িং সহ যে কোন প্রাণী মারাগেলে তাদের যানাজা পরিয়ে মানি দিতাম যেভাবে মানুষ মাটি দেয়া হয় ঠিক সেভাবে। এই উপন্যাস পরার পরে ফারুককে খুব মিছ করছি। ও বেঁচে থাকলে হয়তে একটা ফোন দিয়ে বলতাম ভাই এটা পড়। দরকার হলে কুরিয়ারে পাঠিয়েও দিতাম। ছোটবেলা থেকে ফারুকের একমাত্র স্বপ্ন ছিলো আর্মির চাকরি নেয়া। ০৯ সালে এসএসসি দেয়ার পরথেকেই ওর স্বপ্নপূরণের দৌড়ঝাঁপ শুরু ১১ সালে ওর চাকরি হয়। ট্রেনিং শুরু করার আগে ও ঢাকায় আসে আমাদের বাড়িতে। মাসখানেব থেকে চলে যায়। যাওয়ার সময় টাঙ্গইল ভূয়াপূরের গাড়িতে না উঠে বোকা ছেলেটা সিরাজগঞ্জের বাসে উঠেছিলো। তাই যমুনা সেতুর পূর্ব পার্শে (ইব্রাহামাবাদ) নামে এবং রোড ক্রস করার সময় একটি মালবাহী ট্রাক ওকে চাপা দিয়ে দেয়।
Childrens-Book
2
ফ্ল্যাপে লেখা কিছু কথা টাকা আমাদের অক্সিজেনের মতই প্রয়োজন। অক্সিজেন ছাড়া যেমন আমাদের জীবন চলে না। তেমনি টাকা ছাড়াও আমরা একবিন্দুও চলতে পারি না। প্রচলিত বাক্যে বলা হয়ে থাকে- ‘মানি ইজ সেকেন্ড গড়’ অর্থাৎ সৃষ্টিকর্তার পরেই টাকার স্থান। যেহেতু স্রষ্টা অদৃশ্য মহাশক্তির ধারক ও বাহক তাঁকে আমরা দেখতে পাইনা-কিন্তু টাকা দৃশ্যমান বস্তু-আমরা তাকে ধরতে পারি-ছুঁতে পারি। তাই আমার বাস্তব দর্শন হল-‘মানি ইজ ফার্ষ্ট এন্ড লাস্ট গড়’ -এই পৃথিবীতে টাকাই হচ্ছে-দৃশ্যমান স্রষ্টা। জন্ম থেকে মৃত্যু অবধি আমাদের ওপর যার অসীম প্রভাব তাই হল টাকা। টাকা থাকলে বৃদ্ধি থাকে আর বুদ্ধি থাকলেও টাকা থাকে। বুদ্ধি দিয়ে টাকা ধরা যায় আবার টাকা দিয়েও টাকা ধরা যায়। টাকার অসীম ক্ষমতা-তাই আমাদের টাকা চাই। সেজন্য টাকা ধরার বিশেষ জ্ঞান নিয়ে এই গ্রন্থের আত্মপ্রকাশ।
Motivational
6
Same line repeating multiple times. He needs to improve his writing skill.
Political
3
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা আমরা যখন রাস্তা দিয়ে হাটি তখন আমরা হরেক রকম মানুষ দেখি এদের মধ্যে কেও কেও হয় স্পেশাল। এই মানুষ গুলো শারীরিক বা মানসিক ভাবে হয়তো আমাদের মত নয়, কিন্তু তাদেরও ভাবনা আছে, অনুভূতি আছে। যেহেতু স্বাভাবিক মানুষের তুলনায় তাদের কোনো বিষয়ে সক্ষমতা হয়তোবা একটু কম, তাই তাদের অনুভূতি কখনো কখনো চড়া সুরে বাধা থাকে। এ ধরণের এক স্পেশাল চাইল্ড নিয়ে মুহম্মদ জাফর ইকবালের এ বই। এর রিভিউ: সেন্টু এ উপন্যাসের মুল নায়ক। তাকে হুইল চেয়ারে করে চলাফেরা করতে হয়। তাকে দেখলেই সবাই জিজ্ঞেস করে তার এ অবস্থা কেন? একারণে সেনসেটিভ সেন্টু বিশটা কাগজে বিশ রকম কারণ লিখে রেখেছে। সে কোথাও লিখে রেখেছে, ইলেক্ট্রিক শকের কারণে, কোথাও লিখেছে জিনের কারণে, কোথাও লিখেছে তার বড় ভাই তাকে ধাক্কা মেরে ফেলে দেওয়ার কারণে তার এ অবস্থা হয়েছে। কিন্তু কোথাও সে মুল কারণটা লিখেনি। এই সেন্টুর নানান কীর্তি নিয়েই এগিয়েছে কাহিনী। যা পড়ে একজন মানুষের মন ভালো হয়ে যেতে বাধ্য। এ উপন্যাসে কোনো উথ্থান পতন নেই সত্যি, কিন্তু শারীরিক ভাবে প্রতিবন্ধির জীবন কিভাবে অতিবাহিত হয়, তাদের নিয়ে প্রশাসনের সর্বশেষ ভাবনা কী, তা জানার জন্য এ উপন্যাস পাঠ্য। বলা হয় একটা দেশের দশ শতাংশ মানুষ হচ্ছে শারীরিক ভাবে অক্ষম, তাদের জীবনযাত্রা আমাদের থেকে একটু হয়ত ভিন্ন, কিন্তু তারা আমাদেরই অংশ। এই বই আমাদের সমাজের সেইসব স্পেশাল চাইল্ডদের মানসিক অবস্থারই প্রতিফলন করে। লেখকের এই বই নিতু এবং তার বন্ধুরা, আখি এবং আমরা কজন, লাবু এল শহরে, এই বইগুলোরই সিকুয়েন্স। কিন্তু কাহিনীর ঘটনাক্রম অন্যগুলো থেকে ভিন্ন। সব কিছু মিলিয়ে এই বইয়ের রেটিং আমার কাছে ৪/৫
Childrens-Book
2
Such a good book. Loved it
Fiction
0
বই : হৃদয়নদী। লেখক : হরিশংকর জলদাস। মূল্য : ২৭০ টাকা। পৃষ্ঠা : ১৪৪। প্রচ্ছদ : সব্যসাচী হাজরা। প্রকাশনী : অবসর। আমি হৃদয়ের কথা বলিতে ব্যাকুল, শুধাইল না কেহ। সে তো এল না, যারে সঁপিলাম এই প্রাণ মন দেহ। কবি গুরু কি ভেবে উপরের চরণ যুগল লিখেছিলেন আমার তা জানা নেই। তবে হয়ত প্রতিটা মানুষের হৃদয় জুড়েই থাকে এক নিরব নদী। যা বয়ে চলে নিশ্চুপ নিরবধি। যার উপর আমাদের নিজের কোনো দখল থাকে না। থাকে না সেই নদীকে নিয়ন্ত্রণ করার ক্ষমতা। সে নদী তার কথামালার ঢেউ তুলে ছুটে চলে অন্য কোনো হৃদয়মোহনার খোঁজে। হরিশংকর জলদাস তেমনই এক মানবী ও তার হৃদয়নদী তুলে ধরেছেন এই উপন্যাসে। চলুন পাঠক, ঘুরে আসি সেই মানবীর হৃদয়নদীর পাড় থেকে। জানার চেষ্টা করি সেই স্রোতস্বিনীর প্রবাহের গতিপ্রকৃতি। #কাহিনী_সংক্ষেপ গল্পের শুরুতেই দেখা যায়, পারভীন আক্তার বিছানা ছেড়ে হোটেলের বারান্দায় এসে দাঁড়ায়। সেন্টমার্টিনের ব্লু মেরিনের তিনতলা এই হোটেল থেকে খুব সহজের চোখে পড়ে বঙ্গোপসাগরের নীলজল রাশি। পারভীন তার দৃষ্টি সীমার মধ্যে প্রকৃতির স্নিগ্ধ মায়াময় রূপ দেখ বিক্ষিপ্ত মনকে বশে আনার চেষ্টা করে যাচ্ছে। একটা সরকারী কলেজে অধ্যাপনা করে পারভীন, বিভাগীয় প্রধান। সেই কলেজের সকল শিক্ষক পরিবার-পরিজন নিয়ে বছরে একবার বেরিয়ে পড়েন ঘোরার জন্য। এবার তারা এসেছেন সেন্টমার্টিনে। উঠেছেন ব্লু মেরিন হোটেলে। পারভীন-দম্পতিও এসেছেন এই সফরে। তাদের দুই ছেলে, এক মেয়ে। বড় ছেলে বউ নিয়ে আলাদা থাকে নিজ কর্মস্থলে, মেয়ে শ্বশুর বাড়িতে, আর ছোট ছেলে শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ে। স্বামী ফরহাদ বছর খানেক হয় রিটায়ার্ড করেছেন। রগচটা স্বভাবের না হলেও অফিসের বড়সাহেব হবার কারণে বা স্ত্রীর প্রতিক্ষণের চাপাচাপিতে তার মধ্যে এক ধরনের রুক্ষ মেজাজ জায়গা করে নিয়েছে। চাকরি গেলেও তার তিরিক্ষি মেজাজ রিটায়ার হবার পরেও রয়ে গেছে। যার প্রয়োগ সে অধীনস্থদের উপর করে থাকে কারণে অকারণে বা সামান্য কারণে। আপাত দৃষ্টিতে দেখতে সুখী পরিবার বলেই মনে হয়। আদতে কি তারা সুখী? গেল ক'বছর পারভীন ফরহাদের মধ্যে শারীরিক অক্ষমতা লক্ষ করেছেন। পারভীনের আহবানে ফরহাদ তেমন সাড়া দিতে পারে না। তাই হয়ত দুইজনের মধ্যে একধরনের দূরত্ব সৃষ্টি করে এক অদৃশ্যমান দেয়াল তুলেছেন ফরহাদ। পারভীন যখন গভীর আবেগে কথা বলতে আসে ফরহাদ তখন বই নিয়ে বসে থাকে অথবা তার শখের বাগান পরিচর্যা করতে যায়। বা অন্য কোনো বাহানা করে বসে। নিজেকে পারভীনের কাছ থেকে দূরে রাখতেই যেনো এই প্রয়াস। আর কাল রাতের ব্যাপারটায় পারভীন ভীষণ চোট খেয়েছে মনে। শুধু কি এই কারণেই দুইজনের মধ্য তৈরি হচ্ছে এই অদৃশ্য দেয়াল? নাকি আরো কোনো কারণ রয়েছে তার পেছনে? স্বামীর অক্ষমতায় গভীর রাতে কেনইবা নিখিলেশ হানা দেয় পারভীনের হৃদয়নদীতে? কেন এত আক্ষেপ তার নিখিলেশের জন্য? কিন্তু তাদের দুইজনের মধ্যে তো ভালোবাসার কমতি নেই! প্রিয় কন্যা হেমলতা ভালোবেসে বিয়ে করে শ্বশুর বাড়িতে নির্যাতিত হয়। বাপের বাড়িতেও ফিরে আসার পথ থাকে না লতার। মেয়ের সংসার যখন ভাঙ্গে ভাঙ্গে প্রায় পারভীন-ফরহাদ একে অপরকে শক্ত হাতে আগলে রাখে,ভরসা দেয়, সাহস যোগায়। মুখ ফুটে বলার আগেই স্ত্রীর অন্তরজ্বালা টের পায় স্বামী! মেয়ের দুঃখে গভীর বেদনা পারভীনের ভেতর বাহির ছিঁড়েখুঁড়ে খায়। ভীড়ের মাঝেও নিঃসঙ্গতা বোধ তাড়িয়ে বেড়ায় পারভীনকে। সেই একাকীত্ব বোধই কি কাছে নিয়ে আসে নিখিলেশকে!? #মতামত আমি এই প্রথম লেখকের বই পড়ছি। অনেক শুনেছি হরিশংকর জলদাসের লেখার কথা আজ পড়া হলো। প্রথমেই বলি ভালো লাগার কথা! আমি টানা পড়ে শেষ করেছি বইটা। চরিত্র চিত্রণে লেখকের জুরি নেই! মধ্যবয়সী দৃঢ়চেতা, আত্মমর্যাদাশীল এক নারী চরিত্র পারভীন আপনাকে মুগ্ধ করবে। ফরহাদের ভুল ত্রুটিপূর্ণ চরিত্রের মাধুর্য তৃপ্তি দেবে পাঠককে। কাজের মেয়ে মৈরমের ছোট চরিত্রটাও আপনাকে হাসাবে প্রাণখোলা হাসি। লেখার গভীরতা আর ঝলমলে সরলতা বইয়ের শেষ অবধি চুম্বকের ন্যায় ধরে রাখবে পাঠককে। এইবার আসি খারাপ লাগার দিকে। বইটাতে এডাল্টনেস প্রকাশের ভাষাটা একটু যেনো বেশিই তীব্র ছিল। যদিও খুবই ভদ্রভাবে লেখক তা উপস্থাপন করেছেন। বিশেষত প্রথম দিকের বর্ণনাতে। অন্যান্য পাঠকের নিকট হয়ত খুব স্বাভাবিক লাগবে ব্যাপারটা। কিন্তু যেহেতু আমি প্যানপ্যানে উপন্যাস এড়িয়ে চলি, এই কারণেই আমার হয়ত বিষয়টা ভালো লাগেনি। আর নাসিক্যকেশের যে গা ঘিনঘিনে বর্ণনা দিয়েছেন! ইয়া আল্লাহ্‌! আমার গা গুলাচ্ছিল পড়ার সময়। তবে এতেই কিন্তু লেখকের সার্থকতা! তার লেখা তার পাঠককে আলোড়িত করেছে। এই টুকুন বাদ দিলে বাদবাকি পুরোটা বই ছিল চমৎকার সুখপাঠ্য। বই হোক ভালোবাসার প্রতীক।
Fiction
0
রকমারি-বইপোকা রিভিউ নাম-দিপু নাম্বার টু দাম-৯৩টাকা অসাধারন এক কিসোর উপন্যাস।বেশ রোমাঞ্চকর।দিপু নামক এক মা হারা ছেলের কাহিনি।তার বাবা বেশ অদ্ভুত।তার সাথে পরিচয় হয় তারেক নামক আরেক দুস্টু ছেলের। তার মা পাগল।তাকেই ভাল লেগে যায় দিপুর।গল্পের শেষ এ বরাবরের মত জাফর ইকবাল স্যারের এর লেখা আরেকটি মজার আডভেঞ্চার।পড়ার মত একটি বই......
Childrens-Book
2
A very comprehensive history of modern India, and it's surprisingly interesting and gripping given that it is a historical record. A must read for any one who wants to know how modern India came to be, esp. for those of us who were not born when we were not the fast developing nation we are today. Some of the descriptions and narratives are very transcending. They make you fell nostalgic of an event even when you never were there in the first place. It makes you proud and sad and excited and ashamed all in the same book. In short, it tells you about India, why it is unique and what is good and bad about it, and also what we need to do to improve. It has it's shortcoming and there are points where the author's personal views have influenced what should otherwise have been an objective record (Nehru's regime and later BJP's hindutva) but the sheer length and breadth of the content that Guha has presented here, is just so humbling and detailed. The minor flaws are actually minuscule in the larger picture.
Political
3
অনেক বানান ভুল, টাইপিং মিসটেক।
Political
3
মুহম্মদ জাফর ইকবালের হাত থেকে বহুদিন পরে একটা কিশোর সাইফাই পেলাম এবং তাও এমন একটা বই, যেটা পড়ে গত কয়েক বছরের মত হতাশায় পড়লাম না, এবং ধার করে পড়া বইটার একটা কপি কিনে নিতেও মনে চাইলো। কোন এক নামহীন শহরের এক সুনামহীন স্কুলের গল্প এটা, কথিত আছে, এলাকার বিশিষ্ট রাজাকার এবং সন্ত্রাসী এবং না জানি আরও কতকিছু, জনাব হাজী মহব্বতজান এর পয়সায় স্থাপিত এই স্কুলে নেই কোন নিয়ম কানুন, নেই কোন পড়ালেখার চাপ। শিক্ষকরা আদি পন্ডিতদের ঐতিহ্য মেনে ক্লাসে এসে ঘুমাতেন এবং প্রায়ই এক ক্লাসের বদলে অন্য ক্লাসে চলে যেতেন! মনে হয় মাঝে মাঝে ঘুমাবার জায়গা চেঞ্জ করতে ভালই লাগত তাদের! এই অদ্ভুত এবং সকল ফাকিবাজ ছাত্রছাত্রীর স্বপ্নের তী‌‌‌‌‌‌‌‌‌র্থস্থানের মত এই স্কুলের মাঝেই আছে আমাদের গল্পের চরিত্ররা। তারা নিজেরাও কোনকিছু নিয়ে খুব আশাবাদী নয়। না নিজেদের জীবন নিয়ে, না ভবিষ্যত নিয়ে। তারা বেশ ভালভাবেই চিন্তা করছে কে কি হবে এবং যার যার শখ থেকে জানা যায় তাদের মাঝে কেউ দা‌‌‌‌‌‌‌‌‌র্শনিক হবে তো কেউ সিরিয়াল কিলার। একজন হতে চায় মাদক সম্রাজ্ঞী তো অন্য জন সিনেমার নায়িকা। এই তালিকায় সন্ত্রাসী, পীর, সাহিত্যিক, রাজনৈতিক নেতা, কেউই বাদ যায় না। তবে এটা শিওর ছিল, এই বাজে, ফাকিবাজ স্কুল থেকে কোন বৈজ্ঞানিক বার হবে না, কারন বৈজ্ঞানিক হতে হলে অন্তত কিছু পড়ালেখা তো করতেই হয়, আর এদের কেউ পড়ালেখার ধারও ধারে না। স্কুলে আসা আসলে বাপ মাকে বুঝ দেয়া আর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দেবার জন্য। হাজী মহব্বতজানের ঠিক অপোজিটেই ছিল একটি নামকরা প্রাইভেট স্কুল। অক্সব্রীজ স্কুল, পুলের উপরে ষাড় হেটে যায়!! এর নাম নিয়ে মহব্বতজানের ছাত্ররা অনেক মজা করলেও তারা কিছুটা হিংসার চোখেই দেখতো এই ঝকঝকে স্কুলের চকচকে ছাত্রছাত্রীদের। একরাতে কি হল, বিশাল বিস্ফোরণ ঘটে, সারা শহরকে কাপিয়ে দিয়ে অক্সব্রীজ স্কুলের ভবন উড়ে গেল। এর কিছুদিন পরেই স্কুলে এল এক আজব ছেলে। অতি অবশ্যই বড় ঘরের ছেলে, কারন তার মা তাকে গাড়ি করে নামিয়ে দিয়ে গিয়েছে। কিন্তু সে এখানে কেন? সময়ে আবিস্কার হল, অক্সব্রীজ স্কুলের ভবন ধ্বংস হবার পেছনে হাত রয়েছে তারই। এক বিদঘুটে বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা চালাতে গিয়ে সে বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছে স্কুলটার! কি সেই পরীক্ষা? সে ল্যাবে বসে ব্লাকহোল বানাতে গিয়েছিল। সফল কি হয়েছে? নিজেই পড়ে নিন!! অনেক দিন পরে জাফর ইকবালের বই পড়ে অনেক মজা পেয়েছি। ধন্যবাদ তাকে, আবার নতুন করে এই দিকটায় মনোযোগ দেবার জন্য।
Science-Fiction
4
বইঃ দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স লেখকঃ কিয়েগো হিগাশিনো অনুবাদকঃ সালমান হক প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশকালঃ জুন ২০১৬ প্রচ্ছদঃ ডিলান পৃষ্ঠাঃ ২৬৮ মূল্যঃ দুইশত ষাট টাকা মাত্র প্রিভিউঃ অত্যাচারি স্বামীর হাত থেকে পালিয়ে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিস্তরঙ্গভাবেই কেটে যাচ্ছিলো ইয়াসুকোর দিনগুলো। কিন্তু একদিন আবার দেখা দিলো সেই মানুষরূপী আতঙ্ক। নেশার জন্যে টাকা চাই তার। পরিস্থিতি খারাপ হতে শুরু করলো ক্রমেই। ঘটনাচক্রে খুন হয়ে গেলো সে। ত্রানকর্তা হিসেবে এগিয়ে এলো পাশের বাসার নিরীহ এক গণিতের শিক্ষক। কিন্তু এর পেছনে কি স্বার্থ আছে লোকটার? এদিকে লাশ আবিষ্কারের জন্যে উঠেপড়ে লাগলো এক ডিটেক্টিভ। ইয়াসুকোকে আপাতদৃষ্টিতে নির্দোষ মনে হলেও কোথাও যেন খুঁত আছে তার গল্পে। তদন্তের স্বার্থে সে সাহায্য চাইলো ডিটেক্টিভ গ্যালেলিও নামে পরিচিত পদার্থবিজ্ঞানের এক অধ্যাপকের কাছে। কিন্তু খুব দ্রুতই বুঝতে পারলো, ঠান্ডা মাথার এক প্রতিভাবান মানুষের মুখোমুখি হয়েছে তারা। প্রখ্যাত জাপানি থৃলার-লেখক কিয়েগো হিগাশিনোর এই অনবদ্য থৃলারটি পাঠককে ভাবাতে বাধ্য করবে একদম শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত। ----------------------------------------------------------------------------- নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গিঃ বইটা পড়ে প্রথমেই যেটা মনে হয়েছিলো, “দৃশ্যম” সিনেমার সাথে এই বইয়ের কনসেপ্টের মিল আছে। খুব সামান্য মিল, তবে মিলটা গুরুত্বপূর্ণ। বইয়ের কাহিনীতে অনাকাঙ্খিতভাবে একটা খুন হয়, সেই খুনের সকল তথ্যপ্রমাণ লোপাট করতে দৃশ্যপটে আসেন অসম্ভব মেধাবী এক গণিতের শিক্ষক, গণিতের সূত্রের মত করে তিনি সবকিছু পুলিশের চোখের আড়াল করতে শুরু করেন। পুলিশকে বারবার হেনস্থা করে যান তার অতিসক্রিয় মগজ দিয়ে। দৃশ্যমেও এরকম এক খুনের প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা দেখেছিলাম। সেটাও আগাগোড়া বুদ্ধির লড়াই ছিলো। তবে, এ বইতে আরেকটা দিক আছেন, আরেকটা চরিত্র আছেন যিনি ঐ গণিতের শিক্ষকের এককালের বন্ধু, একইরকম মেধাবী। তিনি আবার নেমে পড়েন এই খুনের প্রকৃত রহস্য উদ্ঘাটনে, বন্ধুর বিরুদ্ধে। মানে, যেমন কুকুর, তেমন মুগুর...টাইপের একটা ব্যাপার হয়ে যায় এখানে। দুই অসম্ভব মেধাবী শিক্ষক, এককালের দুই ঘনিষ্ঠ বন্ধু... হয়ে যান একে অপরের প্রতিপক্ষ। লড়াই জমে যায়... অসাধারণ! কনসেপ্ট নিয়ে শুধু এটুকুই বলার। আর শেষটা শুধু যে অন্যরকম তা না, থ্রিলার কাহিনীতে এরকম ফিনিশিং আর দেখিনি। যথেষ্ট মানবিক একটা পরিণতি ছিলো কাহিনীর,যেটা বেশ লেগেছে। আগে জানতাম ,জাপানীরা শুধু ছোট ছোট বাড়ি, গাড়ি আর ক্যামেরা বানায়, তারা যে এত সুন্দর, এত নিখুঁত থৃলার লিখতে পারে, কে জানতো! ধন্যবাদ কিয়েগো হিগাশিনোকে। আরেকটা ধন্যবাদ অবশ্যই অনুবাদকের প্রাপ্য। যথেষ্ট সাবলীল অনুবাদ, টানটান অনুবাদ বুঝতেই দেয়নি, আমি অনুবাদ পড়ছি, মূল বই না। সবচেয়ে বড় কথা, এই জাপানি লেখকের বইটা যে তিনি অনুবাদ করার জন্যে বেছে নিয়েছেন, এটা যথেষ্ট প্রশংসনীয় একটা বিষয়। আশা করবো, তিনি এরকম অপ্রত্যাশিত চমক আমাদের নিয়মিতভাবে উপহার দেবেন। বাতিঘরের এ বইতে অনেক খুঁজেও ভুল পেলাম না, হাততালি হবে বাতিঘরের জন্যে। ডিলানের প্রচ্ছদটাও খুব সুন্দর ছিলো। প্রিমিয়াম, ক্ল্যাসিক একটা লুক ছিলো মলাটে। আবার হাততালি। সবমিলিয়ে, “দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স” শুধু একটা থৃলার কাহিনীই নয়, প্রেম, বিচ্ছেদ, মানবিকতা সবমিলিয়ে এক জমজমাট আয়োজন। ভালো লাগবে, নিশ্চয়তা দেয়াই যায়। Happy Reading :D বইয়ের রকমার লিঙ্কঃ https://www.rokomari.com/book/117287/দ্য-ডিভোশন-অব-সাসপেক্ট-এক্স
Thriller
1
(মনের কথাটা দিয়েই রিভিউ শুরু করি) অনেক দিন পর স্যারের একটা স্বাদু – ‘কাহিনী ও ভাষার’ কিছু একটা পেলাম, পড়লাম এবং একটানে শেষ করলামও। স্যারের শেষ দিককার যতগুলি সায়েন্স ফিকশান পড়েছি, বেশিরভাগই ছিলো, "অনেকখানি ফিকশন আর একটুখানি সায়েন্স"। এই বইটা সেই ধারার একটা ব্যতিক্রম- বলতেই হবে। হয়তো হতে পারে কিছু অবাস্তবতার সায়েন্স কিংবা আবেগীয় সাহসের ফলে করে ফেলা কিছু সায়েন্টিফিক অ-অ্যাচিভমেন্ট। তারপরেও তা মুগ্ধতাকে ছাড়িয়ে যেতে পেরেছে অনেক খানিক-ই। একটা স্কুলপড়ুয়া ছেলের স্বপ্ন কত বড় হতে পারে, কতদূরেই বা আপনি তার কল্পনার ফানুসটাকে উড়িয়ে দিতে দেখতে পারেন? বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মুখ থুবড়ে পড়ে যায় তা। “ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা ”-য় স্যার সেই স্বপ্ন নিয়ে অনেক দূর গিয়েছেন এবং আনমনেই প্রতিটি কিশোর পড়ুয়া ছেলে-মেয়ের মাঝে প্রবেশ করিয়ে দিয়েছেন এক অ-পরিধিয় স্বপ্নের বীজ। গল্পের নায়ক মিঠুন একটা ছোট ব্ল্যাকহোল বা ‘ব্ল্যাকহোলের বাচ্চা’ তৈরি করেছিল। সেটা নিয়েই কাহিনীর টুইস্ট ও বেড়ে ওঠা । আস্তে আস্তে সে আর তার টিসি-ফেরত-“হাজী মহব্বতজান”-স্কুলের আপাত অস্পৃশ্য বন্ধুরা মিলে স্কুলের ইতিহাসকে এক নতুন মাত্রা দেয়। কোনদিন বিজ্ঞান মেলার নাম না শোনা একটা স্কুলের বাচ্চারা বিজ্ঞান মেলায় অংশ নিয়ে প্রথম হয়, হারিয়ে দেয় শহরের সবচেয়ে নামজাদা ও কাঙ্ক্ষিত স্কুলটিকে। সেখান থেকেই এক অসময়ে তারা পরিণত হয় চোরাকারবারিদের লক্ষ্যবস্তুতে। এবং বহু কাঠ-খড় পুড়িয়ে তারা বেরিয়ে আসতেও পারে হয়তো। এত ঘটনার ঘনঘটায় কোন ফাঁকে যে পাঠক হিসেবে মিঠুন ও তার বন্ধুদের মিথষ্ক্রিয়ার একজন মনোযোগী দর্শক হয়ে গিয়েছি, খেয়াল করেছি বইটার শেষ হবার পর। স্যার যথারীতি তার বইতে যেমন অনেক অনেক সংলাপের মাঝ দিয়ে সম্পর্কগুলোকে টেনে নিয়ে গেছেন তেমনি ছোটখাট অনেক খুনসুটি ও মজার মজার ঘটনা দিয়ে পুরো গল্পটি সাজিয়েছেন। সেটা নিয়ে নতুন কিছুই বলার নেই, পাঠক নিজ উদ্যোগে তার স্বাদ আস্বাদন করে নেবেন-ই। বলতে গেলে সায়েন্টিফিক কিছু জিনিসের কথা বলতে পারি। ম্যাস-এনার্জি কনভার্সনের ধারণা যেমন স্যার এনেছেন, তেমনি তার টুকটাক( যদি ফ্লাইং মেশিনের তৈরিটাকে টুকটাক ধরে নেই আরকি!! ) কিছু (অ)প্রয়োগের কথাও বলেছেন । এসেছে ডার্ক এনার্জি, বোজন-মেসন, ফ্রি এনার্জি রিলিজিং-এরকম অনেকগুলি বৈজ্ঞানিক পরিভাষার কথাও। স্কুলপড়ুয়া অনেক ছেলেমেয়ের পক্ষেই জিনিসগুলির ব্যাখ্যা বা কার্যকারণ দাঁড়া করা বেশ কঠিনই। তবে সে ব্যর্থতা কখনোই কাহিনীর এগিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাড়াবেনা। পরিশেষে মানব মনের মহৎ আর সুন্দর বোধগুলোর প্রাধান্যসুলভ পরিসমাপ্তিই গল্পটিকে পূর্ণতা দিয়েছে। তবে একটা কথা কিন্তু সত্য, বইটি পড়ার পর সব কিশোর-কিশোরীর মনেই সায়েন্টিফিক অনেকগুলি যৌক্তিক প্রশ্নের উদয় হবে। এবং একসময় যখন তারা তা জানার জন্য উপযুক্ত হবে, সেগুলোর উত্তর খুজতে তাদের উতলা হবারও যথেষ্টই কারণ থাকবে বৈকি!! অনেকের অগোচরেই যে জাফর স্যার একদল বিজ্ঞানমনস্ক প্রজন্মের সূচনা করে দিয়ে গেলেন, পুরো বইটি পড়ে এই জিনিসটাকেই আমার কেন জানি বেশি গুরুত্বপূর্ণ মনে হয়!!! ধন্যবাদ তাই স্যারকে!!
Science-Fiction
4
নিষ্ঠুর একদল অমানুষের বিরুদ্ধে লড়তে গিয়ে গভীর জঙ্গলে হারিয়ে গেছে নম্র, ভদ্র ছেলেটি। ওর সঙ্গে চার বছর আগে পরিচয় হয়েছিল রানার। জর্জের বৃদ্ধ, অসহায় বাবা অনেক খুঁজে বের করলেন রানাকে, চেয়ে বসলেন সাহায্য। তাঁদের কাছে জর্জের ডগট্যাগ ও রানার নাম লেখা কাগজ দিয়ে গেছে কেউ। অবাক ব্যাপার! যে এসেছিল, সেই লোকটা খুন হয়েছে কয়েক বছর আগে রানার হাতেই! খরচের টাকা দেবেন সে সাধ্য নেই, কিন্তু ছেলেকে ফিরে পেলে চিরকৃতজ্ঞ হবেন বুড়ো-বুড়ি। বুঝল রানা, টোপ ফেলেছে কেউ। রানাকে চায়। কিন্তু সে কে— কেনই বা এই ফাঁদ? জড়িয়ে গেল রানা অদ্ভুত এক রহস্যে। ওর সঙ্গে চলল দুর্ধর্ষ ক’জন ঘনিষ্ঠ বন্ধু। কিন্তু ওরা জানে না, ফণা তুলে অপেক্ষা করছে ভয়ঙ্কর এক বিষনাগিনী! এমন ভাবেই শুরু করেছে রহস্যপূর্ণ বইটি । বাংলাদেশের কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের এক দুর্দান্ত দুঃসাহসী স্পাই|গোপন মিশন নিয়ে ঘুরে বেড়ায় দেশ-দেশান্তরে|বিচিত্র তার জীবন|অদ্ভুত রহস্যময় তার গতিবিধি|কোমল কঠোরে মেশানো নিষ্ঠুর সুন্দর এক অন্তর|একা,টানে সবাইকে,কিন্তু বাঁধনে জড়ায়না|কোথায়ও অন্যায় অবিচার অত্যাচার দেখলে রুখে দাড়ায়|পদে পদে তার বিপদ শিহরণ ভয়,আর মৃত্যুর হাতছানি|তবে আধুনিক মনস্ক পাঠককে ঠিকই বাঁধনে জড়িয়েছে মাসুদ রানা—বাংলা ভাষায় লেখা স্পাই থ্রিলারের প্রধান চরিত্র। বন্ধু গীতিকার মাসুদ করিমের নামের প্রথম অংশ ও আর নিজের প্রিয় ঐতিহাসিক চরিত্র রানা প্রতাপের নামের প্রথম অংশ মিলিয়ে মাসুদ রানার নামকরণ করেন কাজীদা। সাংবাদিক বন্ধু রাহাত খানের নামে নামকরণ বুড়ো মানে রানার বস মেজর রাহাতের চরিত্রটি। প্রথমে পাকিস্তানি কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের আর ১৯৭১ সালের পরে বাংলাদেশ কাউন্টার ইন্টেলিজেন্সের (বিসিআই) প্রধান তিনি। রানার সহকর্মী ও বন্ধু সোহেল। আর আছে সোহানা চৌধুরী যে শুধু সহকর্মীই নয়, বান্ধবীও। প্রেমিকাও? হয়তো-বা কখনো কখনো। গিলটি মিঞা অবশ্য সোহানাকে কখনো ‘বউদি’ সম্বোধন করেছে। আছে রানার চিরশত্রু পাগল বিজ্ঞানী প্রফেসর কবীর চৌধুরী। পাঠক ও ভক্তকুলের কাছে এই চরিত্রগুলোর আবেদনও কোনো অংশে কম নয়।
Thriller
1
রূপকথার মতো তার জীবন। অনুকরণযোগ্য তার দেশপ্রেম এবং উদ্যম। তার সততা দৃষ্টান্তযোগ্য। ঘোড়ায় চড়তে জানতেন না, যুদ্ধ করলেও যুদ্ধের নিয়মকানুন কিছুই জানতেন না। অথচ তাকে দেখলেই সৈন্যরা সাহসী হয়ে উঠত। দুর্জয় সাহসী, গভীর দেশপ্রেমের অধিকারী, নির্ভীক চিত্তের জোয়ান অব আর্ক যুদ্ধক্ষেত্রেও করুণার প্রতিমূর্তি হয়ে উঠেছিলেন। তার মৃত্যু ফরাসিদের মনে নতুন চেতনা, নতুন উদ্দীপনা এনে দেয়। ফ্রান্সে ইংরেজদের অবরোধের চিহ্নই তারা মুছে ফেলে।
War
5
ফিরোজের সমস্যাটা শুরু হয় এইভাবে-- সে দুই বছর আগে জানুয়ারি মাসে তার এক বন্দুর বাড়ি গিয়েছিল। যাবার উদ্দেশ্য ছিল একটাই গ্রাম দেখা। বন্দুর বাড়ি ময়মনসিংহের মোহনগঞ্জে। চমৎকার একটা জায়গা। ভোরবেলা আকাসের গায়ে নীলাভ গারো পাহাড় দেখা যায়। চারিদিকে ধূ-ধূ প্রান্তর, বর্ষা আসামাত্রই যা পানিতে ডুবে যায় ।সেই পানি সমুদ্রের মত গর্জন করতে থাকে। এখন অবশ্যি শুকনো খটখটে চারিদিক। তবু ফিরোজ মুগ্ধ হয়ে গেল। সবচেয়ে মুগ্ধ হল বন্দূর বাড়ি দেখে--বিশাল এক দালান। সিনেমাতে পুরনো আমলের জমিদার বাড়ির মতো বাড়ি। একেকটি ঘর এত উচু এবং এত বিশাল যে, কথা বললেই প্রতিধ্বনী হয়। ফিরোজের বন্দুর নাম আজমল চৌধূরী। ফিরোজের বিস্ময়ের সীমা রইলনা। কী কান্ড। সে মুগ্ধ কণ্ঠে বলল,'এ তো হুলস্তুল ব্যাপাররে আজমল!তোরা রাজা-মহারাজা ছিলি-- তা তো কোনোদিন বলিসনি।' 'এখন কিছুই নেই । দালানটাই আছে আর কিছুই নেই। সেই দালানটাই ভেঙ্গে ভেঙ্গে পড়ছে। আরেকটা ভূমিকম্প হলে গোটা দালানটাই ভেঙ্গে পড়বে। তাছাড়া খুব সাপের উপদ্রব।' বড় আনন্দে সময় কাটতে লাগল। গ্রাম যে এত ইন্টারেস্টিং হবে তা তার ধারনার বাইরে ছিল। শুদু একটা খটকা লেগে থাকল মনে। আজমলের বোনের সাথে তার দেখা হলনা, যদিও মেয়েটি এবাড়িতেই থাকে। মেয়েটির নাম নাজ। সাজ্জাদ হোসেন দরজা ঠেলে ভিতরে ঢুকলেন। টর্চের আলো ফেললেন মিসির আলির মুখে। সাজ্জাদ হোসেনের মুখে এক ধরনের প্রশান্তি লক্ষ করা গেল। কারণ, নগ্নগাত্র আগন্তুককে কিছুক্ষণ আাগেই ধরা হয়েছে। খুবই আশ্চর্যের ব্যাপার, পুলিশকে সে প্রথম যে কথাগুলি বলে তা হচ্ছে,' আপনারা স্যারকে বাচানোর চেষ্টা করুন। এক্ষুনি হাসপাতালে নিয়ে যান।আর আমার বাবাকে ফোন করে বলুন আমি ভাল হয়ে গেছি। স্যারের বাসায় একজনের সাথে দেখা হয়েছিল। সে আমাকে ভাল করে দিয়েছে।।। যুক্তি আর আদি-ভৌতিকের যুগলবন্দী। উপন্যাসটা আপনাকে এক বসাতে পড়তেই হবে।।।
Fiction
0
#উপমা___ লক্ষ কোটি মুমূর্ষুর এই কারাগার, এই ধূলি-ধূম্রগর্ভ বিস্তৃত আঁধার ডুবে যায় নীলিমায়-স্বপ্নায়ত মুগ্ধ আঁখিপাতে, -শঙ্খশুভ্র মেঘপুঞ্জে , শুক্লাকাশে, নক্ষত্রের রাতে; ভেঙে যায় কীটপ্রায় ধরণীর বিশীর্ণ নির্মোক, তোমার চকিত স্পর্শে, হে অতন্দ্র দূর কল্পলোক। -----------নীলিমা (জীবনানন্দ দাশ) #গল্প_অল্প_অল্প___ জুয়েল একটু লক্ষ্য করে দেখল মেয়েটা টেনে টেনে হাটে! কেন? মেয়েটার নির্লিপ্ত উত্তর কাটা ফুটেছে। কবে? সেই ছোটবেরলায়! কাটাটার নাম পোলিও। মেয়েটার নাম বিনু। জুয়েলের বন্ধু শহীদের বোন। দেখতে কালো, বুদ্ধিভিত্তিক দিক, শারীরীক দিক সবদিকেই পিছিয়ে। ওদিকে জুয়েল ছেলেটা বেশ সুদর্শন, চনমনে যুবক। জানা গেল বিণুর ভাই শহীদকে শহরে পাঠিয়েছে জুয়েল, অথচ নিজে থাকছে শহীদদের গ্রামের বাড়ি, প্রথমবারের মতো। কারণ জানা নেই বিনুর। কিন্তু সে কি যেন একটা টান অনুভব করছে জুয়েলের প্রতি। ওদিকে জুয়েল উদাস। বিনু ভেবে পায়না তার কি এতো উদাসীনতা! ওদিকে শহীদ গেল দোলনদের বাসায়। মেয়েটা দেখতে বড়ই সাধারণ, কিন্তু সব ছাপিয়ে ব্যক্তিত্ব প্রকাশ পাচ্ছে। শহীদ তানিয়ার খবর জানতে চায়। তানিয়াকে ঘর থেকে বের হতে দেয়া হচ্ছে না। ফোন দেয়া হচ্ছে না। এদিকে চিন্তার কারণ একটা না। জুয়েলের পিছনে ভাড়াটে গুন্ডা লেলিয়ে দিয়েছে তানিয়ার ভাই সাবের। কিন্তু কেন? জানা গেল তানিয়া আর জুয়েল পালিয়ে বিয়ে করে ফেলেছে। জানাজানির পর তানিয়াদের পক্ষে বেশিই চটে গেছে। এদিকে তানিয়া নাছোড়বান্দা, ভাইয়েরাও তেমন রগচটা। ভাই ভাবি বারবার তাকে বুঝাচ্ছে এ বিয়ের ভবিষ্যৎ নেই। একটা বেকার সদ্য পাশ করা ছেলের সাথে থাকা সম্ভব না। ছেলেটা নিতান্ত মধ্যবিত্ত, এদের উমেদারির খোঁজে ধন্না দিতে হয়, সেখানও ভবিষ্যৎ দোদুল্যমান। শহীদ দোলনকে রাজি করাল সে তানিয়াদের বাসায় যাবে খোঁজ নিতে, যদি অপমান করে করুক। ওদিকে হাওরে গিয়ে জুয়েল মুগ্ধ। এত সুন্দর জায়গা গ্রামে থাকতে পারে! পুর্ণিমা রাতে এই নির্জন হাওর কেমন হবে সে ভাবে! বিনুর কথায় জুয়েল জনতে পারে গ্রামে বোস্টমীদি নামের একজন আছেন যে কিনা মানুষের মুখ দেখে সব বলে দিতে পারে । তারা সেখানে যায়। বোস্টমীদি হলো রাধার আরেকনাম। রাধার দুই জন্মের একটাতে সে বৃন্দাবনে থাকত, সহজেই কৃষ্ণের সাথে মিলিত হতে পারত। অন্যটাতে কৃষ্ণ রাধাকে ছেড়ে মথুরা চলে যায়। বিরহিণী রাধা তার ধরা ছোঁয়া পায় না। জুয়েল জানতে চায় বোস্টমীদির এমন কোনো গল্প আছে নাকি! জুয়েলের কথায় বিনু মনে পড়ে বোস্টমীদি তাদের দেখে বলে, বাধা আছে কেটে যাবে সেটা। আবার বলে জগতের নিয়ম একজন হাসে একজন কাঁদে...... এক অদৃশ্য সম্পর্কে মায়ায় বাধা পড়ে জুয়েল, তানিয়া আর বিনু....। তবে কি...?? #বইটার_ভালো_লাগা_ পল্টটা সুন্দর..... সংলাপ গুলো বেশ জুতসই। প্রেমের গল্প হলেও এডাল্ট কিছু ছিল না । বইটার নামের নাথে মিল রেখেই সুখ দুঃখ দুটি সমান করেই দেয়া আছে। ইমদাদুল হক মিলনের অন্যন্য বই এর মতো এখানে বখে যাওয়া কোনো মানুষকে প্রধান চরিত্রে না বসিয়ে একটা রুচিশীল কাজ করেছেন, যেটা ভালো লেগেছে। #বইটার_ভালো_না_লাগা বইটা বর্ণনানির্ভর না বরং সংলাপ নির্ভর। কিছু জায়গাতে আবশ্যক বর্ণনাও স্কিপ করে গেছেন। কয়েক জায়গাতে সংলাপ অযথা টেনে বড় করেছেন। বইটাতে শার্ফ, বাল কি? (বল কি?), হিষাবে (হিসেবে) এই ধরনের আরো কয়েকটা বানানেরর ভুল চোখে পড়েছে। প্রুফ রিডিং আরো ভালো করা দরকার ছিল। কোনটা কার কথা সেই জিনিসটা গুলিয়ে গেছে বারবার পড়তে গিয়ে । কে কোন কথাটা বলছে সেটা পুরা বই এ এক জায়গাতেও পেলাম না... :/ #মতামত___ ইমদাদুল হক মিলনের লেখার ধরন অনেকে ভালো লাগে না, কারণ এটা সংলাপ নির্ভর। তবে উনার পল্টগুলো বেশ লাগে, যদিও সিনেমেটিক একটু। যেমন ধরুন, এই গল্পটা সমরেশ মজুমদার লেখলে হয়ত তিনি দেখাতেন তানিয়ার ভাই ভাবীদের মাঝেও সমস্যা হচ্ছে, সেটার মোড় ধরে আরো কিছু চরিত্র এনে ভিন্ন পথে হাঁটা ধরতেন। ইমদাদুল হক মিলন তা করেনি। তবে তিনি যেভাবে শুরু আর শেষ করেছেন তা অবশ্যই চমকপ্রদ। সর্বসাকুল্যে আমার রেটিং যদিও একটু কম হলো, তবুও পড়ে দেখার আমন্ত্রণ থাকল...
Fiction
0
অনেক দিন আগে এক শীতের রাতে বাংলার এক মফস্বল স্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন এক স্টেশন মাস্টার। ট্রেনটি যখন স্টেশনে ঢোকে, তার দুটি কামরায় স্টেশন মাস্টারের জন্য তখন অপেক্ষা করছিল এক অদৃশ্য রহস্য, যে রহস্যের জট-জাল বিস্তৃত হয় ভবিষ্যৎ পর্যন্ত। সেই ভবিষ্যতে, ২০১৪ সালে, মানবসভ্যতার এক চূড়ান্ত বিপর্যয়ের সামনে সম্মুখীন হয়। এমনই এক শ্বাসরুদ্ধকর কাহিনীতে কথাশিল্পী দীপেন ভট্টাচার্য মানবসভ্যতার এক ক্রান্তিলগ্নের ছবি এঁকেছেন তাঁর বিজ্ঞান কল্পকাহিনী ‘নক্ষত্রের ঝড়’ উপন্যাসটিতে। এ মহাজাগতিক কাহিনীতে রয়েছে পদার্থবিজ্ঞান, জ্যোতির্বিদ্যা, মানুষের মনোজগৎ ও গ্রহান্তরের ভিন সভ্যতার বিবর্তনের এক চমকপ্রদ সম্মিলন।
Science-Fiction
4
#সংক্ষিপ্ত_রিভিউ : এক অন্যায়ের প্রতিশোধ নিতে গিয়ে যখন আরেক অন্যায়ের সূচনা। #বিস্তারিত_রিভিউ : অদ্ভুত এক সমস্যায় পড়েছে ছোট্ট আফসারা। প্রায় প্রতিরাতেই দুঃস্বপ্নে ঘুম ভাঙে তার। স্বপ্ন গুলো এতটাই ভয়ঙ্কর আর বাস্তব যেটা দৈনিক জীবনে প্রভাব ফেলছে। বিষয়টা নিয়ে ভিষন চিন্তিত আফসারার মা বাবা। যার ফলশ্রুতিতে ইরফান কে নিয়ে আসা হল। ইরফান জানায় আফসারা ব্লাক ম্যাজিকের শিকার। ব্লাক ম্যাজিক এতটাই প্রাচীন আর কঠিন যার মাধ্যমে শুধু নির্দিষ্ট ব্যাক্তি নয় বরং আশেপাশের মানুষেরও মস্তিষ্ক নিয়ন্ত্রণে আনা যাবে। আর এসবের মাধ্যম অদ্ভুত এক কালো পুতুল। যেটা আফসারার ভীষন পছন্দ। কিন্তু সমস্যা যত কঠিনই হোক না কেন তার সমাধান নিশ্চয়ই আছে। কিন্তু সমাধান করার আগে জানা প্রয়োজন কে কিংবা কি কারনে ব্লাক ম্যাজিককে মাধ্যম হিসাবে গ্রহন করেছে। কিন্তু এত সহজেই কি আর সবকিছুই খুজে পাওয়া সম্ভব? আর তাই ইরফান শুরু করে দিলো পড়াশোনা। এবং আফসারার হাতে অদ্ভুত এই কালো পুতুল কিভাবে আসলো সেটা খুজতে গিয়ে পুরো পরিস্থিতি এভাবে পাল্টে যাবে ইরফান হয়তো নিজেও সেটা জানতো না। #পাঠ_প্রতিক্রিয়া : প্রথমেই বলে নেই আমার ভালো লেগেছে, ভালো লাগার প্রথম এবং প্রধান কারন "কোরআন হাদীস " থেকে অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে সাজানো হয়েছে উপন্যাস টি। উপন্যাস টা পড়লে শুধু যে মনোরন্জন হবে তাই না সেই সাথে সমাজে প্রচলিত শিরক বিষয়েও কিছুটা ধারনা পাওয়া যাবে। লেখকের উপস্থাপিত বিষয়গুলো থেকে যদি কেউ একজন শিক্ষা নেয় তাহলেই লেখকের পরকালীন সফলতা আছে বলে আমি মনে করি। পুরো বইটা পড়ার পরেও বইয়ের নামকরণের কারন খুজে পেলাম না। কারন আমি অর্থ জানতাম না। বর্তমান সময়ে এই ধরনের নামগুলো বেশ যাচ্ছে। অনেক লেখকই গল্পের মূল বিষয়টাকে এক নামে প্রকাশ করছে। যেটা আমার সত্যিই ভালো লাগে। কিন্তু আমি উন্নত মানের পাঠক নই বলেই হয়তো অর্থ টা বুঝতে পারিনি যেটা বোঝা উচিত ছিল। তবে আমি মনে করি বইয়ের কোন সাদৃশ্যপূর্ণ জাগায়ায় নামার রহস্য ভেদ করা দরকার। কিংবা হতে পারে ভেদ না করাটা আরেক রহস্য। গল্পের পড়ার প্রায় প্রতিটা সময় মনে হয়েছে আলো অন্ধকারের এই প্রচ্ছদ একেবারেই মানানসই। আর তাছাড়া বইটা ছোট হওয়ার কারনে এক বসায় পড়া কোন ব্যাপার না। এক বসায় পড়েছি এবং শেষ পর্যন্ত মনের মাঝে বেশ একটা উত্তেজনা ছিল। যদিও মনে মনে কাহীনির পরিনতি আন্দাজ করতে চেয়েছিলাম কিন্তু শেষটা অন্যরকম ভাবে হয়েছে। যদিও এই ধরনের ইন্ডিং অপ্রতুল নয় কিন্তু তারপরও উপভোগ করেছি এবং সেইসঙ্গে এই উপন্যাসের পরবর্তী সিরিজ লেখক খুব তাড়াতাড়ি বের করবেন বলে আশারাখি। আশাকরি আপনাদেরও ভালো লাগবে।
Thriller
1
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_ডিসেম্বর উপন্যাসঃ দ্য জাংগল বুক লেখকঃরুডিয়ার্ড কিপলিং অনুবাদঃ রিয়াজুল ইসলাম ধরনঃ শিশু কিশোর প্রকাশনীঃ পান্ঞ্জেরী মুল্যঃ৮৫ টাকা কাহিনী সংক্ষেপঃ এটি ভারতের সিওনী পাহাড়ের এক সন্ধ্যার গল্প। যেখানে বাবা নেকড়ে ঘুম থেকে উঠেই প্রস্তুতি নেয় শিকারে যাওয়ার। নেকড়ের স্ত্রী তাদের সন্তানের সাথে খেলতে থাকে এবং একটি দুষ্টু বাঘ সম্পর্কে কথা বলতে থাকে। দুষ্টু বাঘটির নাম হলো শের খান। সে এতোটাই বদ ছিলো যে বেশীরভাগ সময় তার এলাকায় না থেকে সীমানার বাইরে চলে এসে শিকার করতো যার ফলশ্রুতিতে বকা খেতে হতো এই পাড়ের বাবা নেকড়ে এবং মা নেকড়ে কে। এই দুই নেকড়ে কে তখন জংগলের বাকি সদস্য রা ভুল বুঝতো। এরকম করে দিন যেতে যেতে একদিন ঘটলো আজব কান্ড। বনের মধ্যে হঠাৎ ঝুপঝাপ শব্দ হচ্ছিলো। তা দেখে নেকড়ে সবাইকে সাবধান হতে বলে। কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই তারা দেখতে পারে যে সেখানে একটি মনুষ্য শিশু হাটতে হাটতে চলে এসেছে, তা দেখে তারা একটু অবাক হয় যে এই শিশু এখানে কিভাবে আসে। কিছুক্ষণ পরেই তারা জানতো পারে যে শের খা লোকালয় থেকে মানব শিশু কে ধরে এনেছে শিকার করে খাওয়ার জন্য। বাচ্চাকে দেখে নেকড়ে বাঘের অনেক মায়া হয় এবং বাচ্চাটিকে সব বিপদাপদ থেকে রক্ষা করার দ্বায়িত্ব নেয় সে। এবং শেষ পর্যন্ত বাচ্চার নাম রাখা হয় মোগলি। মোগলি দিনে দিনে বড় হয় জংগলেই, তাকে রাখার জন্য অবশ্য শের খান কে দিতে হয় একটা ষাড় খাবার হিসেবে। মোগলি বন্ধু হিসেবে পাই ভালু কে।। যে কিনা তাকে জংগলের নিয়ম শেখাতে ব্যাস্ত থাকে এবং মোগলি কড়া শাসনে রাখে। প্রথম প্রথম ভালুকে অপছন্দ করলেও পরে মোগলি বুঝতে পারে ভালু যা করে তার ভালোর জন্যেই। কিন্তু মানবশিশু হওয়ার কারনে সে জংগলে সবার চোখে পড়ে। দুষ্টু বানর, হিংস্র পশুপাখি সবাই মোগলিকে হিংসা করা শুরু করে। এমন কি একদিন ছোট্ট মোগলিকে বানরের দল নিজেদের বাসস্থানে নিয়ে আসার জন্য উঠে পড়ে লাগে। মোগলি বানরের চলাফেরা দেখে মনে করে সে যদি ওদের দলে চলে যায় তাহলে ভালুর কড়া নিয়মকানুন থেকে বাঁচবে তাই সে বানর দলের সাথে চলে গেলেও পরে বুঝতে পারে তারা কতো বদ স্বভাবের। এবং সেখান থেকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে তার বন্ধুরা। এরপর থেকে সে সাবধান হতে থাকে। দিনে দিনে যখন সে বড় হয়ে যায় তখন জংগলের পশুপাখিগুলো তাকে আর থাকতে দিতে চায়না।। তারা চাই মোগলি যেন তার নিজের আবাসস্থল লোকালয়ে ফিরে যায়। তাই মোগলি শেষ পর্যন্ত যেতে বাধ্য হয়। কিন্তু হঠাৎ করেই মোগলি দেখে তার জাতির মানুষ গুলো তাকে সেখানে রাখতে চায়না ঐ দিকে জংগলে শের খান তো আছেই।। তাহলে মোগলি এখন কি করবে?? কোন পরিবেশ কে সে নিজের সাথে মানিয় নিবে?? আর তার বাবা মা?? তাদের খুজে পাবে তো মোগলি?? টিকে থাকতে পারবে তো শেষ পর্যন্ত?? সব প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য পড়ুন "দ্য জাংগল বুক" পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ বইটি পড়ার সময় আমার বারবার জনপ্রিয় কার্টুন "মোগলি" কথা মনে হয়েছে। নিজ জাতি যখন কোন মানুষকে অস্বীকার করে তখন একটা মানুষের জীবন কতোটা ভয়াবহ হয়ে যায় এটা আমি এই বইটি পড়ে বুঝেছি। আর স্নেহ মমতা একটা মানুষকে কতো আগলিয় রাখে তারও নিদর্শন পায় আমরা বইটিতে। বইটি জংগল বুক নাম হলেও সেখানকার পরিস্থিতি ও আমাদের মনুষ্য সমাজের মতো এটা বোঝা যাই সহজে। কোন জায়গায় সম্পুর্ণ ভালো কিছু দিয়ে পরিপুর্ন না। আবার কোন জায়গাতেও শুধু খারাপের বসবাস না। এটাই বইটির বড় শিক্ষা।।
Childrens-Book
2
উপন্যাসিকদের একটা বড় বদগুন হল, তারা নানা পদ শেষে শেষে পাঠক কে কষ্ট দিয়ে শেষ করতে ভালোবাসেন। হয়তো সুনীল এর মত পুরো উপন্যাসের মুল নায়ক মারা যাবে, নয়তো পুরো উপন্যাসের সেই ভালো চরিত্রটি সবচেয়ে খারাপ চরিত্রের কাছে হার মানবে। বিভূতিভূষণের আদর্শ হিন্দু হোটেল বইটি পড়বার সময় পুরো সময় টি জুড়ে মনে আমার সেই ভয়। আহারে কত কষ্ট, কত স্বপ্নের সেই গড়ে তোলা কার না কার ষড়যন্ত্রে ভেঙ্গে যাবে। হাজারি সেই রাধুনি ঠাকুর থেকে হোটেল মালিক হবার গল্প। পুরো উপন্যাস পড়েছি এক বসাতে, তবে হ্যা মাঝখানে হারানোর ভয় এত প্রবল হয়ে গিয়েছিল যে একটু টুক করে তাই শেষটা দেখে আসি। বেশ প্রেরনার বই, মানুষের মনে স্বপ্ন থাকতে হয়-তাহলেই না বুড়ো বয়সে মানুষ জোয়ান থাকে। সেই স্বপ্নই তাকে এক দেশ থেকে আরেক দেশে যাবার স্বপ্ন দেখায়। যেসকল উপন্যাসিক মনে করেন-শেষে একটু কষ্ট না দিলে লোকে মনে রাখে না-তাদের বড় উত্তর এই বইটি।
Fiction
0
মানুষের কল্পনার জগত বিশাল। আর সেই কল্পনার জগতে দেখা হয়ে যায় সেই মানুষের সাথে যাকে সে লালন করে নিজের ভেতর নিভৃতে কোথাও। মূর্ছনা পাগলের মত ভালোবাসে এমনি একজন মানুষকে যার বাস এমনি কোনো এক নিভৃতে কোথাও। আদিত্য রায়হান মানেই মূর্ছনার সেই কল্পনার জগত। যার লেখা বার বার পড়তে গিয়ে একসময় মূর্ছনা ভালোবেসে ফেলে সেই মানুষটিকেই। কিন্তু তার জানা নেই লেখক শুধু লিখেই চলে পাঠকের আবেগ সব সময় তাকে ছুঁতে পারে না। মূর্ছনা আর আদিত্য রায়হানের এই অসম প্রেম কখনো তাই ভাঙতে পারবে না বাস্তবতার দেয়াল, যেখানে অনেক আগেই দাঁড়িয়ে আছে রিদিতা নামের একজন। মূর্ছনা তবুও ছুটে যায়, আর কিছু নয় আদিত্য একবার শুধু বলুক তুমি আমার নীল ঝিনুকের গল্প! অসম প্রেমের বৈসাদৃশ্য নিয়ে রচিত তুমি আমার নীল ঝিনুকের গল্প...
Fiction
0
অনেক অনেক বছর পরের পৃথিবী। যেখানে মানুষ বিভিন্ন স্তরে বিভক্ত। যোগাযোগের মাধ্যম ক্ষীন। এক জায়গার মানুষ জানেনা অন্য জায়গায় কি হচ্ছে। মানুষের কষ্ট করতে হচ্ছে তথ্য , খাবার এর জন্যে। এমনকি আশ্রয়ের জন্যেও। মানুষ নিরাপদ নয়। কারন কোনো আইন শৃঙ্খলা ব্যবস্থা নেই। মানুষকে পশুর মত ধরে বিক্রি করে দেয়া হচ্ছে। মানুষকে পশুর মত ব্যবহার করা হচ্ছে। মেরে ফেলা হচ্ছে। এমনি এক সময়কাল এর এক তরুণ রুহান। রুহান এর কৌতূহল অনেক বেশি। জানার আগ্রহ বেশি। বুদ্ধি বেশি। যদিও তখনকার সময়ে বই নামের কোনো কিছুর অস্তিত্ব নেই। কারন মানুষ এর কিছু মনে রাখতে হলে ব্যবহার করে ক্রিস্টাল ডিস্ক। কিন্তু কৌতূহলের কারনে রুহান পড়তে শিখো। হটাত একদিন রুহান দের পরিবারে ঝড় নেমে আসে। রুহান কে ধরে নিয়ে যাওয়া হয়। এরপর রুহান কে বিক্রি করে দেয়া হয়। বুদ্ধির গুনে রুহান বেচে যায়। এবং শুধু বেচে যায় না। হয়ে যায় খেলোয়াড়। এ হল এমন এক খেলা যেখানে মানুষ মানুষ কে মারে। আবার মানুষ এই খেলা দেখার জন্যে টিকেট কেটে খেলা দেখতেও আসে। রুহান কে এই খেলার জন্যে ট্রেনি দেয়া হয়। এ যেন সেই অতীত কালের গ্ল্যাডিয়েটর দের কাহিনী। জাই হোক রুহান তার প্রতিপক্ষ কে নিয়ে খেলা থেকে পালিয়ে আসে। এবং ক্রিটীনা নামে এক মেয়ে কে বিক্রির হাত থেকে উদ্ধার করে । ধীরে ধীরে তাঁদের মধ্যে সম্পর্ক হয়। কিন্তু খলনায়ক ক্রিভন এর হা্য।থেকে তাঁদের কে উদ্ধার করবে। কিভাবে উদ্ধার করবে...জানার জন্যে শেষ করতেই হবে রহস্য রোমাঞ্চে ভরা এই বইটি।
Science-Fiction
4
বাড়ির নাম আতর বাড়ি। বাড়ির মালিক মবিন সাহেব কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন। সারা জীবনে অনেক টাকা তিনি কামিয়েছেন, যদিও তিনি এতিমখানায় মানুষ। তার টাকাপয়সার হিসাব রাখার জন্য চারজন চার্টার্ড একাউন্টস আছে। বাড়িতে কর্মচারী নিয়ে তিনি একাই থাকেন। তার আগের ম্যানেজার গুরুতর অপরাধ করেছেন বলে তাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। অবশ্য সে যদি ৫০ হাজার বার কানে ধরে উঠবস করতে পারে তাহলে চাকরিতে পুনরায় বহাল করা হবে। শফিক এই বাড়িতে চাকরিতে জয়েন করেছে। বেতন ভাল, কিন্তু কাজটা কি সেটা সে এখনও জানেনা। এজন্য সে কিছুটা বিভ্রান্ত। চাকরিতে জয়েন করার কিছুদিনের মধ্যেই তাকে একটা মোবাইল এবং সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য একটা গাড়ি দেয়া হয়। তার কয়দিন পর চার বেডরুমের একটা ফ্ল্যাটও দেয়া হয়। এতকিছু পেয়েও শফিক কেন জানি মবিন সাহেবকে পছন্দ করে না। যদিও সেটা সে প্রকাশ করেনা। মেজাজ খারাপের ঝালটা যায় তার স্ত্রী মীরার উপর দিয়ে। মবিন সাহেব একবার বিয়ে করেছিলেন ৭ ঘন্টার জন্য। রাত ১ টা ১০ এ বিয়ে হয়, সকাল ৮ টা ১০ এ তালাক হয়ে যায়। সেই মেয়ের আবার অন্যত্র বিয়ে হয়, একটা মেয়েও হয়। মবিন সাহেবের ধারনা মেয়েটা তার। মবিন সাহেব এখনও সেই মহিলার খোঁজখবর রাখেন। এটা সেটা পাঠান। শফিকের কাজ হলো, সেই মহিলার সাথে যোগাযোগ রাখা। মবিন সাহেব কিছু পাঠাতে চাইলেও শফিকের হাতে পাঠান। এসবের সাথে শফিকের বাবাও যুক্ত হয়ে যান। ব্যক্তিগত মতামতঃ অন্যসব বইয়ের মত না হলেও ততটা খারাপও লাগেনি। শফিকের বাবা-মা দুজনেই আনন্দ দিয়েছেন। শফিকের মেয়ে নিশো মাঝরাতে উঠে বাবা-মা কে বিব্রত করে, এটাও মজার বিষয়। এসবের মধ্যেও কিছুটা সাসপেন্স আছে, বারবার মনে হতে থাকবে তারপর কি হবে, তারপর কি হবে? সবমিলিয়ে ভালই বলা চলে।
Fiction
0
লেখক তখন সবেমাত্র বিবাহ বিচ্ছেদ করছেন। দ্বিতীয় বিয়ে করেননি। একাকি বাসা ভাড়া নিয়ে থাকতেন উত্তরায়। সেখানেই একদিন এসে হাজির হয় এক শিক্ষক। নীলগঞ্জ গার্লস হাইস্কুলের বিএসসি শিক্ষক। নাম নলিনী ভট্টাচার্য। লেখকের জন্য ধোপখোলা বাজার থেকে ইলিশ, মিঠাপানির গলদা চিংড়ি আর টেংরা মাছ কিনে এনেছেন। ভদ্রলোক মিসির আলী পড়ে এই মাছগুলোর কথা জানতে পেরেছেন। উদ্দেশ্য লেখককে রেধে খাওয়াবেন। তবে আরও একটি উদ্দেশ্য আছে। তার জীবনের গল্প শোনাবেন লেখককে। সমস্যাটা মিসির আলির বইতে পাওয়া সমস্যার মতই প্রায়। নলিনী বাবু একই সাথে দুইটা জগতে বাস করেন। এক জগতের সাথে আরেক জগতে সামান্য মিল থাকলেও অনেক কিছু আলাদা। গল্প শেষ হওয়ার আগেই নলিনী বাবুর প্রস্থান। লেখক বের হলেন নলিনী বাবুর খোজে। পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ হুমায়ূন আহমেদের জন্মদিনে শাওন ম্যাডামের বক্তৃতায় তিনি এই বইটার কথা বলেন। ওইদিনই স্যারের জন্মদিন উপলক্ষে দুইটা বই কিনি যার একটা নলিনী বাবু B.Sc. মিসির আলির গল্পের মত রহস্য থাকলেও এখানে সেটা সমাধানের জন্য মিসির আলি নেই। একই সাথে লেখকের ব্যাক্তিগত জীবনের খুটিনাটি খুচরা আলাপও আপনাকে আনন্দ দিবে। খুব আহামরি বই না। তবে সময় কাটানোর জন্য পারফেক্ট। অনেক বৈজ্ঞানিক কথাবার্তা আছে যা আমার মাথার উপর দিয়ে গেছে। ব্যাক্তিগত আলাপ-সালাপ সিরিয়াসলি না নিয়ে গল্প হিসেবে পড়লে সময়টা চমৎকার কাটবে। বইটা ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারিতেই চারবার মুদ্রিত হয়েছে। বর্তমানে ৭ম মুদ্রন আছে বাজারে। বুছতেই পারছেন ব্যাপারটা!
Fiction
0
"এবং মানুষ" প্রকাশনী হতে প্রকাশিত "ভূতের বাড়ি দেখতে গিয়ে" বইটি একটি শিশু-কিশোর গল্প সমগ্র। বইটি লিখেছেন আনোয়ার কামাল।বইটি সর্বপ্রথম প্রকাশিত হয় ফেব্রুয়ারি, ২০১৭ অমর একুশে বই মেলায়।আনোয়ার কামাল হলেন একজন দক্ষ লেখক। অসাধারণ মনোভাবের এই লেখকের হাতের জাদু তার প্রত্যেকটি সাহিত্য কর্মে প্রকাশ পেয়েছে।ছাত্র জীবন থেকেই সাংবাদিকতা ও লেখালেখির সাথে যুক্ত ছিলেন তিনি।ম্যাগাজিন নিয়ে আলোচনা,দেশ-বিদেশের নানা অনলাইন পোট্রালে লেখালিখি ছাড়াও নানা রকম কাজে তিনি নিজেকে আত্মসংযমী করেছিলেন।বেশ কিছু মাসের প্রচেষ্টায় তিনি এই অসাধারণ শিশুকিশোর উপন্যাস "ভূতের বাড়ি দেখতে গিয়ে" বইটি রচনা করেন যা শিশুকিশোর ছাড়াও বই প্রেমিকদের আকর্ষিত করেছে।লেখন আনোয়ার কামালের অসাধারণ সংস্করণ এই বইটি। শিশুরা সাধারণত ভূতের কাল্পনিক গল্প পড়তে অনেক ভালোবাসে।কেননা তারা অনেক কৌতুহল প্রিয় হয়।।সব বিষয়ে তাদের থাকে অসীম কৌতুহল।ভূতের ক্ষেত্রে তো অনেক।ভূত নিয়ে শিশুদের মধ্যে আলাদা এক উত্তেজনা রয়েছে।আর ঠিক সেই দিক বিবেচনা করেই লেখক আনোয়ার কামাল এই ১৬ পৃষ্ঠার বইটিতে অসাধারণ ভূতের গল্প লিখেছেন যা শিশুদের আনন্দ দিতে যথেষ্ট। শিশুদের জন্য লেখক এই মজাদার বইটি লিখেছেন যাতে ভূতের কাল্পনিক রহস্য,উত্তেজনা ও নানা মজাদার ঘটনা দারা ভরা।অসাধারণ এই বইটি ভূতের গল্পের জন্য অসাধারণ সংস্করণ লেখক আনোয়ার কামালের। বইটি পড়লে বইটির বাস্তবতা শিশুদেরকে ভূতের রাজ্যে নিয়ে চলে যাবে। আর এটিই হলো বইটির বিশেষত্ব।
Childrens-Book
2