summary
stringlengths
1
29.6k
genre
stringclasses
7 values
Label
int64
0
6
প্রাত্যহিক জীবনে প্রতিমুহূর্তে মানুষের হৃদয় স্পন্দিত হচ্ছে হর্ষ, শোক, ঘৃণা, প্রেম, হতাশা প্রভৃতি আবেগের দ্বারা, পাচ্ছে প্রতিমুহূর্তেই অনুরণনের ছোঁয়া। অনুরণনের মাত্রা কখনোবা থাকে অত্যন্ত উঁচুতে, কখনোবা মনে হয় দিগন্তসীমার নৈকট্যে খুব কাছাকাছি আর কখনোবা থাকে মাঝামাঝি অবস্থানে। সাহিত্যের কোন ফিল্ড বা ক্ষেত্রে যদি এই সবগুলো টনিক বাস্তবতার নিরিখে একত্রে সমন্বিত হয় তাহলে সে ক্ষেত্রটি হয়ে ওঠে অত্যন্ত শক্তিশালী অথচ আকর্ষণীয় একটি ক্ষেত্রে যা মাধ্যাকর্ষণ শক্তির ন্যায় চারপাশের সকল কিছুকে তার দিকে টেনে নিয়ে যেতে থাকে অবলীলায়। ‍‍অমর একুশে গ্রন্থমেলা-২০১২ ইং সালে প্রকাশিত হরিশংকর জলদাসের লেখা “‍রামগোলাম” বইটি সেরকমই আশ্চর্য একটি ক্ষেত্র যা সফলতার সাথে একত্রে সমন্বয় ঘটিয়েছে মানব মনে প্রতমিুহূর্তে অনুরণন তোলা হর্ষ, শোক, ঘৃণা, প্রেম, হতাশা প্রভৃতি আবেদনগুলোর। আবেদনগুলো “রামগোলাম” বইটিতে বর্ণিত শুধুমাত্র হরিজনদের জীবনালেখ্যই তুলে ধরেছে এমনটি নয়, লেখকের ক্র্যাফটসম্যানশিপ বা কুশলী বর্ণনায়, অনুভূতির সংস্পর্শে ক্ষণে ক্ষণে হয়ে ওঠে আমাদের প্রতিদিনকার জীবনভাষ্য। মেথরদের সঙ্গে দীর্ঘসময় মিশে দলিত, অধিকারবঞ্চিত এই সম্প্রদায়কে নিয়ে হরিশংকর আমাদের এমন এক আবদ্ধ জনপদে উপস্থাপন করেন যেখানে মহাভারত, মনুসংহিতা, পুরাণকথার সাথে মেথরজীবন মিলেমিশে একাকার হয়ে উঠেছে। বঞ্চনা, প্রেম এবং স্পষ্টীকৃত অলংকরনের চ্ছটায় সুসজ্জিত “রামগোলাম” বইটি হয়ে উঠেছে মেথর সমাজের অদ্যোপ্রান্ত ইতিহাস। প্রিয় পাঠক, আসুননা চলে আসুন, ঘুরে আসি ফিরিঙ্গিবাজার সেবক কলোনি থেকে যেখানে জড়িয়ে আছে, যেখানে ছড়িয়ে আছে পুরো চার মেথরপট্রির শক্তিশালী সর্দার একজন গুরুচরণের শুরু থেকে শেষ, তার ছেলে শিউচরন, গুরুচরণ পৌত্র উপন্যাসের কেন্দ্রবিন্দু রামগোলাম, গুরুচরণ স্ত্রী একজন অঞ্জলী বাঈ, পুরোহিত বাবাঠাকুর, মাদারবাড়ি হরিজনপল্লির বলিষ্ঠ কার্তিক, মদোশ্যামল,বান্ডেল মুখ্য চেদিলাল, মনের অজান্তে ঝলক দিয়ে ওঠা মীরজাফরী চ্ছটায় মোড়ানো রাবন বংশের বিভীষণ যোগেশ, সদা শঙ্কিত ঝাউতলাপট্রির বাসিন্দা রূপলাল ও তার সাহসী কন্যা রূপালী,বিশ্বস্থ চমনলাল-মনুলাল-রামপ্রসাদ, সর্বোপরি করপোরেশনের সর্বময় একচ্ছত্র ক্ষমতার অধিকারী বড় কর্তা আব্দুস ছালাম সাহেব এবং তার ডান হাত ধুরন্ধর জমাদার হারাধনবাবুর জানা অজানার যজ্ঞ। “নদীতো এঁকেবেঁকেই চলে। কিন্তু কর্ণফুলী চট্রগ্রাম শহরের দক্ষিণ পাশ দিয়ে পূর্ব থেকে পশ্চিমে বেশ ক’মাইল একেবারে সোজা বয়ে গেছে। নদীর জন্যই শহর। কর্ণফুলী না থাকলে চট্রগ্রাম শহর গড়ে উঠতনা। পৃথিবীর প্রায় সব শহড় গড়ে ওঠার পেছনে নদীর অবদান আছে। এই কর্ণফুলীর পাড়েই মাঝিরঘাট-সদরঘাট, জাহাজ ভেড়ার জেটি, কাস্টম হাউস। এই নদীর কারনেই বিদেশিদের আগমন-আক্রমন, ব্যবসা-শোষণ, ইংরেজ রাজত্ব, ব্রিটিশ পীড়ন। এই নদীর পাড়েই ব্রিটিশদের আবাসস্থল পাথরঘাটা-ফিরিঙ্গিবাজার। স্থানীয়রা গোরা ব্রিটিশদের বলত ফিরিঙ্গি। ফিরিঙ্গিবাজার থেকে একটু দূরে, কর্নফুলীর একেবারে কোল ঘেঁষে তৈরী করা হলো ফিরিঙ্গিবাজার সেবক কলোনি। পাঁচতলার দুটো বিল্ডিং। একটি বিল্ডিংয়ের তিনতলার চৌদ্দ নম্বর ঘরে গুরুচরণ থাকে। নামে কলোনি, আশেপাশের সভ্যভব্য মানুষরা বলে মেথরপট্রি। ফিরিঙ্গিবাজার মেথরপট্রিতে সত্তরটি পরিবার থাকে। তার মধ্যে থাকে গুরুচরণের পরিবারও। প্রত্যেক পরিবারের জন্য দুটো কামরা বরাদ্দ। একটি রান্নাঘর অন্যটি শোবার ঘর।প্রতিটি পরিবারের তিনটি জেনারেশন একসঙ্গে থাকে। দাদা-দাদি,মা-বাপ আর ছেলেমেয়ে নিয়ে পরিবারের নয়-দশজন সদস্য” # পুরুষানুক্রমিকভাবেই চলছে এই কঠিন নিয়ম,সদস্য যাই হোকনা কেনো ঘর সবের উপর দুটো,তাই মাউথপিস গুরুচরণের ভাষ্যের মধ্য দিয়ে মনুসংহিতার বর্ণনার প্রতি লেখকের তীব্র কটাক্ষের শ্লেষ পাওয়া য়ায় তার স্বরূপে: “ওই মনু লিখেছে ব্রাম্মণের ঘর থাকবে পাঁচটা, ক্ষত্রিয়দের ঘর হবে চারটা, বৈশ্যরা তিনটি ঘর বাঁধতে পারবে, ইচ্ছে করলে বা সামর্থ্য থাকলেও দুইটার বেশী ঘরের মালিক আমরা হতে পারবোনা” একটি পরিবারের মধ্য দিয়েই ফুঁটে বেড়েয়েছে অনেকগুলো পরিবারের জমানো কথা, তাদের ক্ষোভ, হাসি, আনন্দ, কান্নার দমক। লেখক নিজে মিশেছেন ফুঁসে ওঠা সে দমকে, মিশিয়েছেন সকলকে তাই বইটির চতুর্থ অধ্যায়ে প্রসঙ্গক্রমেই টেনে এনেছেন পবিত্র দেবতা ব্রম্মার মহীথর সৃষ্টির অভিলাষকে, কেনো অমৃতের পুত্রদের থেকে তিনি অপবিত্র মহীথর নামক পুত্রটিকে আলাদা করে রেখেছিলেন, সে গোপন অংশটুকুকে আলোতে নিয়ে এসেছেন,পুরোহিত সম্প্রদায়ের সৃষ্টি করা মিথ্যে বানীগুলোকে চুলচেরা বিশ্লেষণ করেছেন সর্বোপরি তুলে ধরেছেন শাস্ত্রবাণীকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে, ধর্মীয় অনুশাসনের কুযুক্তি কিভাবে মেথর সম্প্রদায়কে হিন্দু জাতিস্তম্ভের নিম্নতম স্তরে ঠেলে দিয়েছে। #জগতের সবকিছু পরিবর্তন হয়ে যায় ধীরে ধীরে, একটি সময় ফিকে হয়ে আসে পরিবর্তনের আশায় ঝুলতে থাকা গুরুচরণের মনও। বইটির প্রথমার্ধে হরিজনদের স্বার্থ রক্ষায় মেথর সর্দার গুরুচরণের উপস্থিতি এতোটাই প্রবল যে পড়তে গিয়ে মনে কিঞ্চিৎ সন্দেহ জেগে ওঠে আসলে বইটির নাম গুরুচরণ না হয়ে রামগোলাম কেনো! সংশয় অবশ্য মিটে যায় লেখকের সেন্টার পয়েন্ট কুশীলব রামগোলামের নামের সন্ধিবিচ্ছেদের মধ্য দিয়ে এবং অবশ্যই তা গুরুচরণের ভাষ্যে রামগোলামের নাম কে রেখেছিলো সে প্রেক্ষাপটে কৈশোরোত্তীর্ণ রামগোলামের সে প্রশ্নের উত্তরে: “ধাইয়ের কথা শুনে পূর্ব দিকে ফিরে আমি চিৎকার করে বলে উঠেছিলাম, আমার নাতির নাম হবে রামগোলাম। হিন্দুদের দশ অবতারের একজন রামচন্দ্র, তাঁকে বড় শ্রদ্ধা করে হিন্দুরা, বড় ভালোবাসে। গোলাম মুসলমানি নাম। এ দুটো জোড়া লাগিয়ে আমি তোমার নাম রেখেছিলাম রামগোলাম। এ দুটো নামের খাতিরে হলেও অন্তত হিন্দু মুসলমানরা তোমাকে ঘৃণা করবেনা, লাথি-কিল দেবেনা, শালা-বানচোৎ করবেনা।” #পুরো বইটিতে ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে হরিজনপল্লির গুরুচরণের সাহসিকতার কথা,কর্পোরেশনের বড়কর্তার অন্যায়ের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর কথা, স্ত্রী অঞ্জলির প্রতি এক স্বামীর ভালোবাসার কথা। বইটি পাঠ করার প্রতিমুহূর্তেই পাঠকের অবচেতন মন গুরুচরণের প্রতি পক্ষ নিয়ে নেয়, পুত্র শিউচরণ এবং চাঁপারানীর ভালোবাসার কথকতা তুচ্ছ এবং ঈষৎ হালকা হয়ে যায় বয়সী গুরুচরণ এবং অঞ্জলীর আবেগময় কথোপকথনের নিকট। “মাঠের একপাশে দাঁড়িয়ে তরুন রামগোলাম মানুষজন দেখছে। গেট দিয়ে কেউ ঢুকছে, কেউ বের হচ্ছে। কারও পায়ে তাড়া, কেউ ধীর পায়ে হাঁটছে। কারও চেহারা উদ্বিগ্নতায় ভরা, আর কেউ কেউ হাসতে হাসতে যাতায়াত করছে। দু-চারটা কার এবং জিপ করপোরেশনের মূল বিল্ডিংয়ের মুখে এসে থামছে। ওসব গাড়ি থেকে বনেদিমুখো সাহেবরা নেমে তরতর করে সিঁড়ি বেয়ে ওপর দিকে উঠে যাচ্ছে। রামগোলামের বুঝতে অসুবিধা হয়না-এরাই এই করপোরেশনের দণ্ডমুন্ডের মালিক। এদের অঙ্গুলিহেলনে করপোরেশন ওঠে আর বসে। এদের মধ্যে কেউ একজন হয়তো আবদুস ছালাম-করপোরেশনের বড়বাবু। আবদুস ছালাম সাহেবদের হাতে হরিজনদের মরা-বাঁচার নাটাই” #হরিজনরা বুঝতে পারে কিভাবে তাদের পৃথিবী ক্রমান্বয়ে ছোট হয়ে আসছে, তাই তাদের পক্ষে সর্দার হিসেবে লড়াই করার শেষ চেষ্টায় রত হয় গুরুচরণ ‘হুজুর আমাদের চাকরি নাকি এখন থেকে সবাই করতে পারবে? নোটিম জারি করেছেন আপনি? আমরা মাঠেমারা যাবো হুজুর। মেথর আমরা, অন্য কোনোখানে চাকরি করার সুযোগ নেই আমাদের। হিন্দু মুসলমান সবার জন্য খুলে দিলে এই চাকরিতে ঝাঁপিয়ে পড়বে সবাই। না খেয়ে মারা পড়ব আমরা’ অবশ্য বড় সাহেব আব্দুস ছালামের মন তাতে কোনভাবেই টলেনা, টলেনা হারাধনবাবুর মন বরঞ্চ তিনি আশ্রয় নেন কূটচালের, যে চাল হরিজনদের সাথে চালা হয়েছে পুরাণমতে সেই পুরাণকাল থেকেই। “পরের ব্যাপারটা আমার উপর ছেড়ে দেন স্যার। আপনি শুধু রামগোলামকে চাকরিটা দেন। বুকপকেট থেকে ঘড়ি বের করলেন তিনি। ফতুয়ায় ঘড়ির ডায়াল ঘষতে ঘষতে বললেন, কোন কালে মেথরদের আন্দোলন সাকসেসফুল হয়েছে বলেন স্যার? ওরা হলো কুত্তার জাত, একটুকরা মাংস সামনে ছুঁড়ে দিলেনতো ওটা নিয়ে কাড়াকাড়ি শুরু করে দিবে। দু-চারজন মুখ্য আর দু-চারজন যুবককে কয়েকদিন মদে চুবিয়ে রাখবেন। ওরাই স্ট্রাইক ভেঙ্গে কাজে যোগ দেবে” “রামগোলাম আকাশের অজস্র তারার দিকে তাকাতে তাকাতে ভাবে-তুমিওতো আজকে ওই তারাগুলোর মধ্যে জায়গা করে নিয়েছো দাদু। কোন তারাটি তুমি দাদু? কত খুঁজছি তোমাকে! একা করে রেখে গেলে আমাকে। এত তাড়াতাড়ি মরলে কেন তুমি? হরিজনদের দায়ভার তুমি আমার কাঁধে তুলে দিলে। বয়স কম আমার। তারপরও তুমি বললে-রাম, তুমি পারবে। আমি আছিনা! তোমাকে বাতলে দেব সব” #মৃত্যুর পরে হরিজনমুক্তির আন্দোলনে রামগোলামকে দক্ষ সেনাপতির ভূমিকায় গুরুচরন পথ বাতলে দিয়েছিলো কিনা, কিংবা করপোরেশনে চাকরি নেয়ার সুবাদে রামগোলাম হরিজনমুক্তির আন্দোলন ভুলে যোগেশের ন্যায় বড় কর্তার তালপাতার সেপাইয়ে পরিণত হয়েছিলো কিনা সেই শেষাংশের দেখা পাওয়ার জন্য হলেও বইটি পাঠ জরুরী। এখানে লক্ষণীয় বিষয় প্রথমাংশে প্রত্যক্ষভাবে বর্ণিত গুরুচরণের ভূমিকা শেষাংশে পরোক্ষভাবে হলেও পাঠকের মনজুড়ে ভর করে, ক্ষণে ক্ষনে হলেও স্মরণ করিয়ে দেয় তিরোহিত গুরুচরণের কথা। মেথরদের প্রতি যুগ-যুগান্তরব্যাপী প্রথাবদ্ধ ঘৃণার অখ্যান তুলে ধরার প্রয়োজনে লেখক যেমনভাবে প্রচলিত প্রথার প্রতি তার বৃদ্ধাঙ্গুল প্রদর্শণীর পাশাপাশি তার শ্লেষ ঝরিয়েছেন ঠিক তেমনিভাবে দক্ষ হাতের লেখনীর ঘোরে আবদ্ধ করেছেন পাঠকদের, ভাবনার অবকাশ করে দিয়েছেন অনায়াশে, অবকাশে। প্রিয় পাঠক, ফিরিঙ্গিবাজার মেথরপট্রি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষক কুতুবুদ্দীনের আবৃত্তি করা কবিতার মধ্য দিয়ে শেষ করছি: “হে মোর দুর্ভাগা দেশ, যাদের করেছ অপমান অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান। মানুষের অধিকারে বঞ্চিত করেছ যারে, সম্মুখে দাঁড়ায়ে রেখে তবু কোলে দাও নাই স্থান, অপমানে হতে হবে তাহাদের সবার সমান” *************************** এক নজরেঃ বইঃ রামগোলাম লেখকঃ হরিশংকর জলদাস ধরনঃ উপন্যাস প্রচ্ছদঃ সব্যসাচী হাজরা প্রকাশকঃ প্রথমা প্রকাশ প্রথম প্রকাশঃ অমর একুশে গ্রন্থমেলা, ২০১৩ মোট পৃষ্ঠাঃ ১৯২ মূল্যঃ ৩২০.০০ টাকা আইএসবিএনঃ 978-984-8765-86-9 **************************** লেখক পরিচিতিঃ [“হরিশংকর জলদাস” এর জন্ম ১২ ই অক্টোবর ১৯৫৫, চট্রগ্রামে সমুদ্রপারের জেলেসমাজে। চুয়াল্লিশ বছর বয়সে কলম ধরেন তিনি, লেখেন নদীভিত্তিক বাংলা উপন্যাস ও কৈবর্ত জনজীবন। “জলপুত্র” “দহনকাল”, “কসবি” আর “জলদাসীর গল্প” তাঁকে লেখালেখির জগতে প্রতিষ্ঠা পাইয়ে দেয়। “লোকবাদক বিনয়বাঁশী” এবং “জীবনানন্দ ও তাঁর কাল” লেখকের অন্যরকম দুটি বই। “কৈবর্তকথা” ও “নিজের সঙ্গে দেখা” নামে দুটি আত্মজৈবনিক গ্রন্থ আছে তাঁর। দলিত সমাজের লেখক তিনি, দলিতদের নিয়েই লেখেন। পেশায় অধ্যাপক হরিশংকর এরই মধ্যে ব্যাপকভাবে নন্দিত হয়েছেন লেখার ক্ষেত্রে লুকোচুরি বা রাখঢাক না করার কারনে। তাঁর লেখায় জেলে, মেথর, বারবনিতা, ধোপা, নাপিত, ভিক্ষুক, মুচি, কামার-কুমার ফিরে ফিরে আসে। ১৪১৬ বঙ্গাব্দে হরিশংকর জলদাসের “দহনকাল” উপন্যাসটি ‘প্রথম আলো বর্ষসেরা বই’ পুরস্কার লাভ করে। ২০১১ ইং সালে এই শক্তিশালী লেখক “ড. রশীদ আল ফারুকী সম্মাননা স্মারক” পুরস্কারে ভূষিত হন।] তথ্যসূত্রঃ বই ও অন্তর্জাল। ছবিসূত্রঃ অন্তর্জাল। ওয়েবসাইট: আশরাফুল কবীরের রাজ্যে ক্রৌঞ্চমিথুনের কথোপকথন ********** ২৮ শে আষাঢ়, ১৪২০ মতিঝিল, ঢাকা।
Fiction
0
বইয়ের বিষয়বস্তু নিয়ে বলার মতো হচ্ছে বইটি অটোমান সাম্রাজ্য নিয়ে লিখা। অটোম্যান ইতিহাসের ৩৭ জন শাসকের ইতিহাস রয়েছে বইতে। শাসক বলার কারণ হচ্ছে সবাই সুলতান উপাধি ধারণ করেন নি। অটোম্যান ইতিহাসের শুরু থেকে এর উত্থান পতন ,বিভিন্ন শাসকের সময়ের রাজ্যের অবস্থা,তাদের নৈতিক দিক ইত্যাদি নিয়ে এই বইতে আলোচনা করা হয়েছে। ইতিহাস পড়া খুব বেশী সুখের বিষয় না যদি কারো বিশেষ আগ্রহ থাকে তবে ভিন্ন কথা। এই বইয়ের ক্ষেত্রে আমি বলতে চাই আমার বিষয়বস্তু নিয়ে আগ্রহ থাকার কারণে অনেক সহজ পাঠ্য মনে হয়েছে সবার সেটা নাও লাগতে পারে। তবে অনেক কিছু জানার রয়েছে বইটায়। একটি সোনালী ইতিহাস যার কিছুই এতদিন জানার সুযোগ হয় নি আমাদের। বইটি আপনাকে ইতিহাসের সেই সময়ে নিয়ে যাবে। বইটি ভালো লাগার আরও একটি কারণ হচ্ছে নিরপেক্ষ আলোচনা। সুলতান বা শাসকদের ভালো খারাপ দুইদিক তুলে ধরা হয়েছে এখানে। তাদের ভুলগুলো এবং কেনও অবশেষে পতন হয়। ৬২৪ বছরের ইতিহাস যা জানা সবার জন্য প্রয়োজন। অটোম্যান কে বাদ দিয়ে ইতিহাস জ্ঞান সম্পূর্ণ নয়। মাত্র ১০০ বছর আগে শেষ হওয়া এই সাম্রাজ্য নিয়ে আমাদের জানা খুবই কম। ৩.৫/৫
War
5
বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালি জাতির জনক। বাংলাদেশ রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠাতা। বাংলাদেশের ইতিহাসের এক অবিসংবাদিত নেতা। পুরো ভারতীয় উপমহাদেশের কয়েকজন শীর্ষস্থানীয় প্রভাবশালী নেতাদের একজন। সেই বৃটিশ বিরোধী আন্দোলন থেকে শুরু করে ৪৭ এর দেশভাগ- পাকিস্তান ও ভারত রাষ্ট্রের অভ্যুদয়, ৫২ এর ভাষা আন্দোলন, ৫৪ এর যুক্তফ্রন্ট, ৬৬ এর ছয়দফা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থান, থেকে শুরু করে ৭১ এর স্বাধীনতা যুদ্ধ বাংলার ইতিহাসের প্রতিটি আন্দোলনে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছেন এবং নেতৃত্ব দিয়েছেন। তার জীবনের অধিকাংশ সময়ই কেটেছে জেলে। তিনি যখন অষ্টম শ্রেনীর ছাত্র, বাংলার ইতিহাসের আরেকজন গৌরবোজ্জ্বল নেতা সোহরোয়ার্দী যান তাদের স্কুল পরিদর্শনে। সেই থেকে তাঁর রাজনীতিতে প্রবেশে। সব সময় থেকেছেন রাজপথে জনগণের মাঝে। কিছুদিন পর পরই জেল জুলুম, মিথ্যা মামলায় কারাবাস। কারাগার যেন তাঁর দ্বিতীয় বাড়ি হয়ে গিয়েছিল সেই মহান নেতার ৭ই মার্চের আহবান – ‘তোমাদের যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক। ৯ মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের পর আমরা স্বাধীনতা অর্জন করে। বঙ্গবন্ধু ছাড়া এই স্বাধীনতা ম্লান, তিনি পাকিস্তানের কারাগারে বন্দী। ১৯৭২ সালের ১০ই জানুয়ারী স্বদেশ প্রত্যাবর্তন করলেন। যুদ্ধ বিধ্বস্ত, দারিদ্রপীড়িত দেশের হাল ধরলেন। চারিদিকে অভুক্ত মানুষ, সারা দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার খুবই করুণ , ভয়াবহ এক যুদ্ধ হয়ে গিয়েছে। গুছিয়ে ওঠার আগে কিছু বিপথগামী সেনা কর্মকর্তা বিদেশী যোগ সাজেশে বঙ্গবন্ধুকে হত্যার ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হলেন। যথারীতি বঙ্গবন্ধুর কাছে খবর আসলো বিভিন্ন জায়গা থেকে, তিনি দেশের মানুষকে এতই বিশ্বাস করতেন- সবার সব তথ্য উড়িয়ে দিলেন। না এমনটা হতেই পারে না, আমার জোয়ানরা কখনো আমার বুকের গুলি চালাতে পারে না। আহ! জাতির ইতিহাসে এই কালিমা লেগে গেল ১৯৭১ সালের ১৫ই আগষ্ট। ১৫ জন নরপশু মিলে মুজিব পরিবারের উপর নৃশংস হত্যাযজ্ঞ চালালেন, সপরিবারে নিহত হলেন আমাদের প্রাণের নেতা। জাতির পিতার মৃত্যু অথচ, সেই জাতি সেই হত্যার বিচার করতে পারলো না, এর থেকে লজ্জার আর কি আছে। এই লজ্জা কিছুটা প্রশমন হয় , দীর্ঘ অপেক্ষার পর ১৯৯৭ সালের এপ্রিলে নিম্ন আদালতে বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার শুরু হলে। তারপর ২০০৯ সালে এই মামলার নিষ্পত্তি সেই ১৫ নরপশুকে হত্যাদন্ড দেয়ার মাধ্যমে। বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার, এর ইতিহাসের উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন বিশেষজ্ঞের লেখায় সম্পাদিত এই বইটি। যা পাঠককে অনেক মর্মস্পর্শী ইতিহাস জানাবে।
Political
3
দূর ভবিষ্যতের কাহিনী । সব গ্রহ মিলে গড়ে উঠেছে “এম্পায়ার”, যার শাসনকেন্দ্র “ট্র্যানটর” নামের গ্রহ । সভ্যতার চরম উৎকর্ষে মানুষ । কিন্তু এম্পায়ারের শাসকদের সীমাহীন লোভ আর অদূরদর্শিতার ফলে স্থবির হয়ে পড়েছে এম্পায়ার । ট্র্যানটরের বিজ্ঞানী “হ্যারি সেলডন” এ সময় আবিষ্কার করেন সাইকোহিস্ট্রি বা মনো-ইতিহাস, উদ্ভাবন সাকোলজি থেকে হলেও যা মূলত স্ট্যাটিসটিক্যাল সায়েন্স । সাইকোহিস্ট্রি গাণিতিক ভাবে বিশাল কোন জনগোষ্ঠির ভবিষ্যৎবানী করতে সক্ষম । মানবগোষ্ঠি যত বড় হবে, সাইকোহিস্ট্রি’র গনিতের ফলাফল (ভবিষ্যৎবানী) হবে তত নির্ভুল । তবে স্ট্যাটিসটিক্যাল সায়েন্স বলেই, কোন নির্দিষ্ট ব্যাক্তি বা কয়েকজন ব্যাক্তি’র বেলায় কার্যকর নয় এই বিজ্ঞান । হ্যারি সেলডন সাইকোহিস্ট্রি’র সাহায্যে ভবিষ্যৎবানী করেন - আর পাঁচশ রের মধ্যেই ধ্বংস হয়ে যাবে এম্পায়ার । সব গ্রহ এম্পায়ারের শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করবে । এই বিদ্রোহ আর যুদ্ধে ধ্বংস হয়ে যাবে মানবসভ্যতা । মানুষ আবার ফিরে যাবে বিজ্ঞানহীন বর্বর যুগে, যার ব্যাপ্তি হবে ত্রিশ হাজার বছর । সেলডনের এই মতবাদ খেপিয়ে দেয় এম্পায়ারের শাসকগোষ্ঠিকে । রাষ্ট্রদ্রোহের মামলায় বিচারের সম্মুখীন করা হয় তাকে । বিচারে প্রশ্নের মুখে দাঁড়িয়ে সেলডন বলেন – তিনি এবং তার প্রজেক্টে কাজ করা বিজ্ঞানীরা ধ্বংস পরবর্তী ত্রিশ হাজার বছরের অন্ধকার যুগকে কমিয়ে এক হাজার বছরে আনতে কাজ করছেন । তারা চান, পৃথিবীর সব জ্ঞানকে একত্রিত করে এন্সাইক্লোপেডিয়া বানাতে এবং সব গ্রহে তার অনুলিপি সংরক্ষন করতে, যাতে অন্ধকার সেই যুগে মানুষ এই এন্সাইক্লোপেডিয়ায় সংরক্ষিত জ্ঞানকে কাজে লাগিয়ে আবার নতুন সভ্যতা গড়ে তুলতে পারে । সেলডনের মতো এতো বিখ্যাত একজন বিজ্ঞানীকে মৃত্যুদন্ড দেয়ার সাহস পায়না শাসকগোষ্ঠি, আবার তাকে ট্র্যানটর-এ রাখাও বিপদজ্জনক । তাই সম্রাটের পক্ষ থেকেই তার কাজকে অনুমোদন ও পৃষ্ঠপোষকতা করা হয় এবং কাজের সুবিধার্থে(!) তাকে এবং তার প্রজেক্টে’র লোকদের পাঠানো হয় এম্পায়ার থেকে অনেক দূরে, গ্যালাক্সির অপর প্রান্তে “টার্মিনাস” নামের একটি জনবসতিহীন গ্রহে । মূলত - সেলডনকে দূরে রাখা এবং নির্বাসনে পাঠানোই ছিল তাদের উদ্দেশ্য । ছ’মাসের মধ্যে সেলডন ও তার প্রজেক্টে’র সব বিজ্ঞানীরা চলে যান টার্মিনাসে । এদিকে এই প্রোপাগান্ডা, বিচার এবং বিচারের ফলাফল ছিল সেলডনের দীর্ঘ দিনের সাইকোহিস্ট্রি’র চর্চা এবং এম্পায়ারের শাসকদের উপর তার পর্যবেক্ষনের উপর ভিত্তি করে পূর্বানুমিত এবং ক্ষেত্র বিশেষে সেলডনেরই পূর্ব পরিকল্পিত । প্রকৃত পক্ষে তিনিই আলাদা একটি গ্রহে যেতে চাইছিলেন তার প্রজেক্টে’র লোকদের,- তথা সেরা বিজ্ঞানীদের নিয়ে । তার আসল লক্ষ্য গ্যালাক্সির সেরা বিজ্ঞানীদের নিয়ে দুটি গ্রহে দুটি “ফাউন্ডেশন” স্থাপন করা, ধ্বংসত্তোর যুগে যাদের নেতৃত্বে গড়ে উঠবে নতুন সভ্যতা এবং প্রতিষ্ঠিত হবে নতুন এম্পায়ার । এর মধ্যে প্রথমটি হবে প্রযুক্তি নির্ভর বিশ্ব, যার অবস্থান টার্মিনাসে । আর দ্বিতীয় ফাউন্ডেশন থাকবে সবার অগোচরে, অজ্ঞাত গ্রহে । প্রথম ফাউন্ডেশনের সাথে সাথে তিনি গোপন এক গ্রহে স্থাপন করেন দ্বিতীয় ফাউন্ডেশন, যার অবস্থান এবং কাজের ব্যপারে, এমনকি প্রথম ফাউন্ডেশন এরও কেউ কিছু জানে না । আর অত্যন্ত সতর্কতার সাথে তিনি নিশ্চিত করেন, সাইকোহিস্ট্রি তো দূরের কথা এমনকি সাইকোলজিতে পন্ডিত কোন বিজ্ঞানী যাতে প্রথম ফাউন্ডেশনে না থাকে । মৃত্যুর আগে সেলডন তার কিছু বক্তব্য হলোগ্রাফিক ভিডিওতে রেখে যান, যেগুলো টার্মিনাসের এক কক্ষে রাখা হয় । বলা হয়, নির্দিষ্ট কিছু বিপর্যয়ের সময় ফাউন্ডেশনের জন্ম বার্ষিকীতে খুলে যাবে ভল্ট এবং আবির্ভূত হবে সেলডনের হলোগ্রাফিক ভিডিও, যাতে থাকবে তার বক্তব্য এবং পথ-নির্দেশনা । পেরিয়ে যায় পঞ্চাশ বছর । মানব সভ্যতার চিরাচরিত নিয়মে আশেপাশের শক্তিশালী গ্রহগুলো দখল করতে চায় ফাউন্ডেশন । কিন্তু রাজনৈতিক প্রজ্ঞাবিহীন বিজ্ঞানীরা এই দখলের বিরূদ্ধে ব্যবস্থা নিতে নারাজ । ফাউন্ডেশনের নতুন জেনারেশন, যাদের নেতা মেয়র “স্যালভর হার্ডিন”, ন্যুনতম আত্বরক্ষার জন্য হলেও সামরিক ক্ষমতা অর্জনের পক্ষে । অন্যদিকে এন্সাইক্লোপেডিয়া কমিটির প্রধানের বক্তব্য- তাদের কাজ শুধু “সেলডন প্ল্যান” অনুযায়ী এন্সাইক্লোপেডিয়া বানানো; সামরিক সক্ষমতা অর্জন নয় । এমনি বিপর্যয়ের সময়, ফাউন্ডেশন স্থাপনের ঞ্চাশতম বার্ষিকীতে খুলে যায় ভল্ট এবং আবির্ভূত হয় সেলডনের হলোগ্রাফিক ভিডিও । পূর্ব ধারণকৃত এই বার্তায় সেলডন প্রকাশ করেন ভয়ঙ্কর সত্য । তিনি বলেন- ফাউন্ডেশনের লক্ষ্য কখনই এন্সাইক্লোপেডিয়া বানানো নয় বরং এম্পায়ারের শাসকদের এই অজুহাত দেখিয়ে তিনি ব্যবস্থা করেন ট্র্যানটর থেকে অনেক দূরে আলাদা একটি গ্রহের, যেখানে থাকবে তরুণ, উদ্যমী এবং মেধাবী কিছু বিজ্ঞানী । এই জনগোষ্ঠী ইম্পেরিয়াল সিভিলাইজেশন থেকে অনেক দূরে থেকে সম্পূর্ণ নিঃসঙ্গ ভাবে বেড়ে উঠবে এবং হাজার বছর পর তারাই গড়ে তুলবে বিজ্ঞান সমৃদ্ধ নতুন সভ্যতা তথা নতুন এম্পায়ার । সেলডন ফাউন্ডেশনের জনগনকে নিজেদের উদ্যোগেই বিপর্যয় থেকে পথ বের নিতে বলেন ।সেদিনই মেয়র স্যালভর হার্ডিন ক্যু’এর মাধ্যমে এন্সাইক্লোপেডিয়া কমিটির প্রধানের কাছ থেকে দখল করেন ক্ষমতা, এন্সাইক্লোপেডিয়া কমিটিকে করা হয় অবলুপ্ত । জটিল থেকে জটিলতর দিকে মোড় নেয় কাহিনী । ফাউন্ডেশনের জনগন পা রাখে তাদের নতুন ইতিহাসের পথে । অস্ত্র নেই, শক্ত অর্থনীতি নেই, তারপরও তাদের মনে দৃঢ় বিশ্বাস – সেলডন প্ল্যান আছে তাদের রক্ষার জন্য । এই সেলডন প্ল্যান আর লুকিয়ে থাকা সেকেন্ড ফাউন্ডেশন রক্ষা করবে তাদের প্রতিটি বিপদে । ফাউন্ডেশন কি পারবে আশেপাশের শক্তিশালী গ্রহগুলোর আগ্রাসন থেকে নিজেদের রক্ষা করতে ? কিভাবে তারা পাড়ি দেবে আরও ৯৫০ বছর ? আদৌ কি সেলডন প্ল্যান সঠিক ? সত্যিই কি তারা গড়ে তুলবে নতুন সভ্যতা ? সেকেন্ড ফাউন্ডেশন কোথায় ? তাদের অবস্থান কেউ জানেনা কেন পড়তে পড়তে পাঠকের মনে হবে, এ যেন পৃথিবী সৃষ্টি থেকে মানব সভ্যতার উম্মেষ, উত্তরণ আর দীর্ঘ পথযাত্রার বর্ণনা’র ক্ষুদ্র সঙ্কলন । ভবিষ্যতের বিজ্ঞান নিয়ে কোন কল্প কাহিনী নয় - আমাদের বর্তমান পৃথিবী আর সমকালীন রাজনীতির কোন কাহিনী । দূর্বলকে সবলের গ্রাস করার আকাঙ্ক্ষা, অর্থনীতির মাধ্যমে সবল হয়ে ওঠা, অজানা জ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রতি মানুষের ভয় এবং তার ব্যাখ্যার জন্য ধর্মকে টানা, অজ্ঞানতাকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করে অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে শাসন, মোল্লাতন্ত্র, স্বৈরাচারী শাসকদের নিজেকে ধর্মীয় অবতার হিসাবে জাহির ও ধর্মকে ব্যবহার করে রাজ্যশাসন ইত্যাদি সব কিছুই যেন মানবসভ্যতার ইতিহাসের কোন না কোন সময়ের কাহিনীকে তুলে ধরে ।যেকোন সায়েন্স ফিকশন থেকে “ফাউন্ডেশন” সিরিজের পার্থক্য – বেশীর ভাগ সায়েন্স ফিকশন যেখানে মূলত ভবিষ্যতের বিজ্ঞান, চমকপ্রদ প্রযুক্তি নিয়ে আবর্তিত হয়, সেখানে ফাউন্ডেশনের বড় আকর্ষণ তার বলিষ্ঠ প্রেক্ষাপট এবং কাহিনী । বিশাল ক্যানভাস, অনেক চরিত্র, কাহিনীর প্রয়োজনে উপযুক্ত মাত্রায় ভবিষ্যতের প্রযুক্তি’র বর্ণনা, গল্পের অভাবনীয় বাঁক এবং মোড় বইটিকে অতুলনীয় উচ্চতায় নিয়ে গেছে । বরং সায়েন্স এর বাপারগুলো রেখে বেশীর ভাগ সময় মন ডুবে থাকে অনুপম দক্ষতায় বিশ্বাসযোগ্য করে ফুটিয়ে তোলা সমাজনীতি, রাজনীতি, অর্থনীতি এবং সার্বিকভাবে একটি মানব সভ্যতা এগিয়ে যাওয়ার গল্পে । সাথে আসিমভের লেখনীর মাজেজা তো আছেই । “ফাউন্ডেশন”, “ফাউন্ডেশন অ্যান্ড এম্পায়ার” এবং “সেকেন্ড ফাউন্ডেশন” নিয়ে ফাউন্ডেশন ট্রীলজী’র মূল বইগুলো । ১৯৬৬ সালে এই ট্রীলজী “বেষ্ট অল টাইম সায়েন্স ফিকশন সিরিজ” হিসাবে “হুগো অ্যাওয়ার্ড” লাভ করে । এই ট্রীলজী’র পাঠকদের চাপে, তিরিশ বছর পর সিরিজটাকে সম্প্রসারিত করে আরও চারটি বই লেখা হয়- “ফাউন্ডেশন এজ”, “প্রিলিউড টু ফাউন্ডেশন”, “ফরোয়ার্ড দ্য ফাউন্ডেশন” এবং “ফাউন্ডেশন অ্যান্ড আর্থ” ।
Science-Fiction
4
আমি যদি নিজে নিজেকে আমার জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ করতে অনুপ্রাণিত করতে পারি তবে সেটাই হবে সবচেয়ে উত্তম পন্থা। আর সেই কঠিন কাজটিই আমি শিখেছি এই বইটি পাঠ করে। দোয়া করি এই বইটি অন্য সকল পাঠককে জীবনকে আরও সুন্দরভাবে যাপন করতে সহায়তা করবে, যেমন এটি আমাকে সহায়তা করেছে।একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সাফল্য অর্জন করুন বইটি এমন নয় যে অনেক মনীষীদের উক্তি ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়ে ভরা। এমনকি এটা অনুপ্রেরণার উক্তিতেও যে ভরপুর তা নয়। অনেকের কাছে এটা সত্য নাও লাগতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এটা এমন এক বই যা পাঠ করলে আপনি আপনার দুই পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াবেন এবং একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ আরম্ভ করবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সাফল্য অর্জন করছেন। কথাটা জাদুর মতো মনে হলেও এটা পুরোপুরি সত্য। এই বইটি পুরোপুরি বাস্তবতা কেন্দ্রিক। বইটিতে বিশ্বের বড় বড় অসংখ্য লোকজনের সাফল্য যাত্রা সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে; তারা কী ধরনের বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছে এবং কীভাবে সেগুলোর মোকাবিলা করেছে তাও বলা হয়েছে। এসব ঘটনাবলি থেকে নেপোলিয়ন হিল কিছু সাধারণ সূত্র আবিষ্কার করেন যা যেকোন মানুষই তার জীবনে কাজে লাগাতে পারে। আর কেউ যদি এই সূত্রগুলো তার বাস্তব জীবনে কাজে লাগায় তবে তার জীবনে আমূল পরিবর্তন ঘটবে, যা অবশ্যই ইতিবাচক। বইটি থেকে আমরা অজস্র ভালো জিনিস শিখতে পারবো। আপনি যদি আপনার জীবনকে উপভোগ করতে চান বা জীবনে কিছু পেতে চান তবে এই বই আপনাকে সেই দিকেই পরিচালিত করবে। আপনি এই বইকে আপনার জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে কাজে লাগাতে পারেন। আপনি জীবনে সুখী হন এবং সফলতা লাভ করেন এই কামনায় শেষ করছি।
Motivational
6
বইটা পড়ে প্রথম যা মনে হলো তা হচ্ছে পুরা টাকাটাই জলে গেলো।বইটা পড়ছিলাম আর পুরাই হুমায়ুন আহমেদের লিখা হিমুর কথাই মনে পড়ছিলো। ব্যাপারটা হচ্ছে লেখক হিসেবে আপনি একটা এস্টাবলিশ চরিত্র কে ব্যাবহার করে দ্বীনের পথের ম্যাসেজটা ছড়িয়ে দিতে পারেন।কিন্তু হুবুহু কপি করে সেইখানে দ্বীনের হাল্কা কথা যথোপযুক্ত রেফারেন্স ছাড়া ঢুকিয়ে দিয়ে আপনি হিমুর ফ্লেবারটা নষ্ট করে দিলেন।একজন দ্বীনের পথে চলার চেষ্টা করা মানুষ হিসেবে, এই ধরনের লিখাকে সমর্থন করতে পারলাম না।আর ব্যাপারটা যেহেতু দ্বীনের, তাই এইখানে অনেক ব্যাকক্লেশ হতে পারে।আপনি এইটার সুযোগ করে দিলেন হুবুহু কপি করে।
Fiction
0
কিশোরদের জন্য জাফর ইকবাল স্যারের লেখা শ্রেষ্ঠ উপন্যাসগুলোর একটি হচ্ছে "আমার বন্ধু রাশেদ"। একজন কিশোরের চোখে ৭১ এর মুক্তিযুদ্ধ কেমন ছিল তার সুন্দর একটি বাস্তবায়ন এই বইটিতে দেখা যায়। মুক্তিযুদ্ধের মত national crisis কিভাবে একজন কিশোরকে মানসিকভাবে mature করে তোলে এবং কিভাবে তা তাদের চিন্তাভাবনা ও কার্যকলাপকে প্রভাবিত করে তা খুব সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই বইটিতে। দেশপ্রেম ও সাহস যখন এক কেন্দ্রে এসে মিলিত হয়, তখন বয়স যতই হোক না কেন, একজন মানুষকে সহজে দমিয়ে রাখা সম্ভব নয়। বইটির শেষ মূহুর্তে এস যে করুণ সমাপ্তি দেখা যায়, তা নিশ্চিতভাবেই প্রতিটি পাঠকের চোখে জল এনে দিবে। বইটি আমার পড়া মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক শ্রেষ্ট কিশোর উপন্যাস।
Childrens-Book
2
''১৯৫২- নিছক কোন সংখ্যা নয়'' ---- মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন _____________________ জনরা পরিচিতি: উপন্যাস হোক বা সমসাময়িক গল্প বা থ্রিলার, যাই বলি না কেন বইটি কোন ঘরানার তা জানা খুব জরুরি।তাহলে লেখক তার পুরোপুরি দিয়ে সেই লক্ষ্য পূরণ করতে পারলো কিনা বা পাঠকের চাহিদা পূরণ করতে পারলো কিনা তা সঠিকভাবে নিরুপন করা যায়।ধরুন আপনি বইয়ের দোকানে গেলেন।গিয়ে বললেন আমি থ্রিলার পড়তে পছন্দ করি।দোকানের মালিক আপনাকে বললো কি ধরণের থ্রিলার চাই আপনার? আপনি তো থ! আপনি বললেন আপনি ঠিক জানেন না থ্রিলার বেশ কয়েক রকম কি, মেলা রকমের হয়।ক্ষেত্র বিশেষে এর চরিত্র আর ক্রাইটেরিয়াও পরিবর্তিত হয়।বাংলাদেশ থ্রিলার পড়ার প্রতি আগ্রহ আছে এমন বহু পাঠক আছে, কিন্তু এই একটা জনরার যে কত রূপ আর বৈচিত্র আছে তা খুব কম পাঠক জানেন।আচ্ছা, এইবার মূল কথায় আশা যাক।১৯৫২-নিছক কোনো সংখ্যা অবশ্যই নয়।এর অর্থ অনেক গভীর।আর এর জন্য সায়েম মোহাইমেন এর সাথে আপনাকেও যে দুর্ধর্ষ এডভেঞ্চারে নেমে পড়তে হবে, এই গরমে একেবারে ঘেমে নেয়ে একাকার হলে তবেই আপনি এডভেঞ্চার ধর্মী থ্রিলারের আসল স্বাদ পাবেন।বোঝা গেছে ব্যাপারটা? #কাহিনী_সংক্ষেপঃ গল্পের শুরুটা সায়েম মোহাইমেনকে নিয়ে। যিনি পেশায় একজন সাংবাদিক। অনেক শখ করে নতুন গাড়ি কিনে প্রথমদিন রাস্তায় নেমেই রহস্যজনক দুর্ঘটনার শিকার হলো।কোনো ছোটখাট সড়ক দুর্ঘটনা নয়।প্রেমিকার সাথে ফোনালাপ করতেই এতো কিছু ঘটে যাবে ভাবতেই পারেনি সায়েম। গোলাম মাওলা, ধানমন্ডি থানার ওসি, সায়েমের বন্ধু।বন্ধু হওয়ার সুবাদে যদিও সায়েম ছাড়া পেতে পারতো কিন্তু ঘটনা অন্য দিকে যেন নাটকীয়ভাবে মোড় নেয় যখন জানা যায় নিহতের পরিচিয়।জানা যায় সে প্রয়াত ভাষা সৈনিক আরিফ সূফীর নাতি আদনান সূফী। এখানেই শেষ নয়।সূফী পরিবার দেশের অন্যতম প্রভাবশালী পরিবার।এদিকে আদনান সূফীকে হত্যার দায় এখন সায়েমের।আর অন্যদিকে নিশু, মাওলার ঠিক করে দেয়া সায়েমের ল-ইয়ার, পোস্ট মর্টেম রিপোর্ট অনুযায়ী তথ্য দেয় আদনান সূফীর মৃত্যু গাড়ির ধাক্কায় হয়নি, হয়েছে জিরো রেঞ্জ থেকে মাথায় গুলি খাওয়ার কারণে।তাহলে দাঁড়ায়, জনাব আদনান সূফী মারা গেছেন সায়েমের এক্সিডেন্টের আগেই। সমস্ত রহস্যের কেন্দ্রবিন্দু ১৯৫২ । হত্যা-ষড়যন্ত্র, রাজনীতির তুমুল মারপ্যাচ, তরুণদের সামাজিক অবক্ষয়ের বাস্তবচিত্র এক এক করে অনেকগুলো ঘটনার জটপাকানো রহস্য আর সেই রহস্যের একমাত্র সমাধান দিতে পারে কেবল ১৯৫২- কারন এটি নিছক কোন সংখ্যা নয় । #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ এই বইটাই আমাকে প্রথম লেখকের লেখার প্রতি একটা গুরু আকর্ষণের সৃষ্টি করেছিল।থ্রিলার আগে কখনোই পড়তাম না।ভাবতাম এসব থ্রিলার ট্রিলার বুঝি ছেলেদের পড়ার বিষয়।১৯৫২-নিছক কোনো সংখ্যা নয় পড়ার জন্য অনেক তাগাদা পাচ্ছিলাম তখন।যে ভাবা সেই কাজ। একবার পড়া শুরু করলে শেষ না করা পর্যন্ত আপনি উঠতে পারবেন না, বইটির টুইস্ট এবং সাসপেন্স আপনাকে বই শেষ করার আগে উঠতে দেবে না।আর সেই থেকেই শুরু আমার থ্রিলারের প্রতি ভালবাসার। এটি একটি মৌলিক থ্রিলার।যেহেতু আমার পড়া প্রথম থ্রিলার তাই আমার পছন্দের দিকটাই ভরপুর।দুই একটা ছোটখাট ভুল ছাড়া তেমন কিছু চোখেই পড়েনি তখন।আমার তখন চোখভরা বিস্ময়।বলবোনা প্রত্যেক পাতাই আমাকে আকর্ষণ করেছে।কিন্তু জায়গায় বিরতি দিয়ে মন ভালো করার মতো কিছু আলোচনা দিয়ে পরক্ষনেই টান টান উত্তেজনা।আমি খালি ভেবেই চলেছি এত্ত রহস্যের সমাধানটা কি হবে।সমাধানটাও মনোমুগদ্ধকর ছিল। আধুনিক বাংলা থ্রিলার সাহিত্যে এক অনবদ্য সংযোজন আমার কাছে তাই বারবার মনে হয়।এই বইটি যদি সিরিজের অংশ হতো তো আমি বাকিগুলো হয়তো তখনি গোগ্রাসে গিলে ফেলতাম।শুধু সাসপেন্স আর টুইস্টই না, আছে হালকা পাতলা রোমান্স, আছে বিরহ, আছে কান্না-হাসি, আছে মানসিক ভয়, আছে অপেক্ষা, আছে সেক্রিফাইস, আছে ভাই-বোনের প্রতি গভীর ভালবাসা, আছে প্রেমিকার প্রতি প্রেমিকের দায়িত্ববোধ, আছে অনুশোচনা, আছে পিতার মমত্ববোধ, আছে ক্ষমতার লোলুপ দৃষ্টি আর গুরুগম্ভীর রাজনৈতিক চক্রান্ত, আছে তরুণ সমাজের অন্ধকার জগতের বাস্তব প্রতিফলন। একটি অমোঘ সত্যি হলো: ''পাপ নাকি তার বাপকেও ছাড়ে না!'' তাহলে কি নেই এই এক মলাটে।এখনো এই বইটি আমার কাছে মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিনের অন্যতম লেখা মনে হয়। #আমার_রেটিং: ৯.০/১০ এক নজরে- নামঃ - ১৯৫২ নিছক কোন সংখ্যা নয় লেখকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ঘরানা: থ্রিলার ও অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাস প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী পৃষ্ঠাঃ ৪১১ মূল্যঃ ৩৪০ টাকা
Thriller
1
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স লেখকঃ কিয়েগো হিগাশিনো অনুবাদঃ সালমান হক ধরনঃঅনুবাদ:রহস্য, গোয়েন্দা, ভৌতিক,থ্রিলার প্রকাশনীঃবাতিঘর প্রকাশনী মূল্যঃ২৬০ টাকা ( রকমারি মূল্যঃ ১৮২ টাকা) . #প্রধান_চরিত্রঃইয়াসুকো_ইশিগামি_ ইয়াউকাওয়া_কিসুনাগি_মিশাতো এদের নিয়েই মূলত রহস্যের শুরু এবং শেষ। . #কাহিনী_সংক্ষেপঃ ইয়াসুকো হানাওকা একজন ডিভোর্সি মহিলা। মেয়ে মিশাতোকে নিয়ে একটা অ্যাপার্টমেন্টে বসবাস করেন। অত্যাচারি স্বামীর হাত থেকে পালিয়ে একমাত্র মেয়েকে নিয়ে নিস্তরঙ্গভাবেই কেটে যাচ্ছিলো ইয়াসুকোর দিনগুলো।বেন্টেন টেই নামের এক লাঞ্চ শপে কাজ করে কোনোমতে দিনাতিপাত চলে যাচ্ছিল তার। অতীতকে মুছে ফেলে এক নিভৃত অঞ্চলে নির্ভেজাল জীবন যাপন করে যাচ্ছিল ইয়াসুকো। নেশাখোর স্বামীর হাত থেকে নিষ্কৃতি পেয়ে একমাত্র মেয়ে মিশাতোকে নিয়ে ভালোই কাটছিল দিনগুলো। হঠাত একদিন দেখা দিলো সেই অত্যাচারী স্বামী, নেশার জন্যে টাকা চাই তার। ঘটনাচক্রে খুন হয়ে গেলো সে। দিশেহারা ইয়াসুকো খুন করার কর কি করবে বুঝে উঠতে পারছিলনা কি করবে।তখন তার সাহায্যে এগিয়ে আসেন ইয়াসুকোর প্রতিবেশী গণিতের শিক্ষক ইশিগামী। কিন্তু এর পেছনে কি স্বার্থ আছে লোকটার? . লাশ আবিষ্কারের পর খুনিকে খোজে বের করতে উঠেপড়ে লাগলো ডিটেক্টিভ কিসুনাগি। ইয়াসুকোকে আপাত দৃষ্টিতে নির্দোষ মনে হলেও কোথাও যেন খুঁত আছে তার গল্পে।কিন্ত কোনো ভাবেই তা তারা বের করতে পারেন না। অসম্ভব মেধাবী গণিতের শিক্ষক ইশিগামি , গণিতের সূত্রের মত করে তিনি সবকিছু পুলিশের চোখের আড়াল করতে শুরু করেন। পুলিশকে বারবার হেনস্থা করে যান তার অতিসক্রিয় মগজ দিয়ে। তখন কিসুনাগি সাহায্যের জন্য আরেক প্রতিভাবান ব্যক্তি যে কিনা ডিটেক্টিভ গ্যালিলিও (ইয়াউকাওয়া) নামে পরিচিত পদার্থবিজ্ঞানের এক অধ্যাপকের কাছে। এদিকে ইয়াউকাওয়া আর ইশিগামি একই ভার্সিটির ছাত্র।কিসুনাগি কে কিছু সাহায্য করতে পারেন কিনা আর অনেকদিন পর পুরানো বন্ধুর খোজ পেয়ে ইশিগামির সাথে দেখা করতে যান ইয়াউকাওয়া। এরপর ঘটনা মোর নেয় আরেকদিকে। বেরিয়ে আসে অজানা আরেক রহস্য।কিসুনাগি আর ইয়াউকাওয়া কি পারবে খুনিকে ধরতে? নাকি অন্য কোনো রহস্যে জড়িয়ে হারিয়ে যাবে আসল খুনি?? . #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ কিয়েগো হিগাশিনোর সবচেয়ে আলোচিত ও প্রশংসিত বই দ্য ডিভোশন অব সাসপেক্ট এক্স এ। বইটাতে ভিক্টিম, অপরাধী মোটামুটি জানাই থাকে, শুধু ছেঁড়া সুতোগুলো জোড়া লাগিয়ে অপরাধীকে ধরার প্রচেষ্টা করা হয়। এ বইয়ে মার মার কাট কাট অ্যাকশন নেই, নেই গা শিউরে উঠার মতো বিকৃত রুচির সিরিয়াল কিলার, ঘন ঘন পট পরিবর্তনের সমারোহও নেই। তবুও কিছু একটা আছে এ বইয়ে। সেই কিছু একটার টানে বইয়ের প্রথম থেকে শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পাতা উল্টাতে বাধ্য হবেন আপনি। গল্পের পরিণতিও আপনাকে ভাবনার খোরাক যোগাবে যথেষ্টই।বই পড়ার ইশিগামি চরিত্রটার প্রতি মায়া পড়ে যায়।অসাধারণ একটি চরিত্র। সব মিলিয়ে বইটা অসম্ভব ভালো লেগেছে। পড়ে দেখতে পারেন আশা করি ভালো লাগবে। হ্যাপি রিডিং....
Thriller
1
এই লেখাটা লেখার আগে চারটা নষ্ট নারীর সাথে আমার কথা হয়েছে। একটা একবারে নিম্ন শ্রেণির। সে তার নাম বলেনি। তার জীবনের কোনো গোপন গল্প নেই। থাকলেও আমার জানা হয়ে ওঠেনি। দ্বিতীয়টা অতি আধুনিক। একটা বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ফ্যাশন ডিজাইনে পড়ছে। এটা এই পুরো ব্যাপারটাকে আধুনিকতা ভাবে। যৌন সম্পর্ককে সে ভালোবাসার অংশ মনে করে। এমনকি যৌনতার ছোটখাটো ব্যাপাগুলো তার কাছে একেবারে ওপেন। চুমু দেয়া কিংবা শরীর দেখানো তার কাছে অতি নগণ্য ব্যাপার। সে ভালো ঘরের সন্তান। আমার এক কোটিপতি ব্যবসায়ী বন্ধুর সাথে প্রায়ই সিলেট-কক্সবাজার যায়। দু-তিন দিন পর ফিরে আসে। আমি ভেবে পাই না এই মেয়ের বাবা-মা মেয়ের বাইরে থাকা মেনে নেয় কিভাবে? তৃতীয়টা প্রফেশনাল বেশ্যা। হোটেলে থাকে। তবে সবাইকে পরিচয় দেয় এয়ার হোস্টেজ। তার প্রোফাইলও বেশ হাই। এটা রাতের কাজ ছাড়াও আরো কিছু অদ্ভুত কাজ করতে পারে। যেমন কাউকে ফাঁসিয়ে দেয়া বা অন্য কোনো কাজ হাসিল করা। বিশেষ করে কাস্টমার ধরার বিজনেসে এর জুড়ি নেই। শেষটার সত্যি সত্যিই চরিত্র খারাপ। এটা সম্ভবত সেক্স ছাড়া চলতে পারে না। বহুগামী পুরুষের মতো বহুগামী মেয়ে। একাধিক পুরুষের আদর নেয়াই তার স্বভাব। ক’দিন আগে বিয়ে হয়েছে, তার পরও এই কাজ বাদ দিতে পারেনি। একবার ভয়াবহ বিপদেও পড়েছিল। এমআর করে কোনো রকমে জান বেঁচেছে। আমি তো ভাবলাম যাক উচিত শিক্ষা হয়েছে। এবার আর যাই হোক চরিত্রটা ভালো হবে। কিন্তু যেই লাউ সেই কদু। অদ্ভুত ব্যাপার হলো মেয়েটা বোরকা পরে। সবাই ভাবে খুবই ধার্মিক মেয়ে। এরা ধর্মটাকেও ব্যবসা হিসেবে বিবেচনা করে। প্রথমজন ছাড়া বাকি তিন বেশ্যার সাথে আমাকে পরিচয় করিয়ে দিয়েছে আমার কোটিপতি বন্ধু। সে বেশ গর্ব করে বলে, এই তিনটাই আমি বলতে পাগল। তিনটারই টেস্ট নিয়েছি। আমিও বেশ খুশি হয়ে বললাম, সবচেয়ে মজার কোনটা? সে অবশ্য উত্তর দেয়নি। শুধু হেসেছে। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে সেঞ্চুরি মানিকের গল্প আমরা সবাই জানি। সে বেশ আলোচিত ছিল। কিন্তু আমাদের সমাজে এমন মানিকের যেমন অভাব নেই, তেমনি অভাব নেই আধুনিক এই বিজনেস ম্যাগনেট বেশ্যারও। এ এক অদ্ভুত মুখোশ। আমি শেষ তিনটাকে দেখার পর হালকা শক হয়েছিলাম। এত সুন্দর, স্মার্ট, সমাজের উঁচু শ্রেণির মেয়ে এরা, সামাজিক স্টাটাসও বেশ হাই। কেউ কোনো দিন ভাবতেই পারবে না এরা আসলে কী? আমরা কি তবে চূড়ান্ত নষ্ট সময়ের মধ্যে প্রবেশ করেছি। নাকি ‘বেশ্যা’ শব্দটার নতুন করে আধুনিক সংজ্ঞা দিতে হবে। আমার জানা নেই।
Fiction
0
'একুয়া রেজিয়া'র 'কিছু বিষাদ হোক পাখি' উপন্যাস পড়বার পর 'আমার মনে হতে লাগলো 'সঞ্জনা' নামের মেয়েটিকে আমি চিনি। মোক্তার হয়তোবা আমাদের অনেকেরই প্রতিরূপ কিংবা আমার অনেকটাই এরকম হতে চাই। নির্মোহ! স্ট্রেইট! এই বইয়ের গল্পগুলো আমার চেনা পরিসরের- একুয়া রেজিয়া 'র প্রথম উপন্যাস "কিছু বিষাদ হোক পাখি"। প্রথম উপন্যাস হিসেবে একুয়া অনেকখানি সফল। পাঠককে মোহগ্রস্থ রাখবার টেকনিক তার জানা আছে এবং তিনি সেটা পেরেছেন শব্দবন্ধন অথবা বর্ণনা কৌশলে.. "কিছু বিষাদ হোক পাখি'র জন্য শুভকামনা।
Fiction
0
অসাধারন বইগুলোর একটি। হুমায়ুন স্যারের পর কেউ লিখতে পারেনি।
Fiction
0
ইতিহাস আশ্রিত দুঃসাহসিক কাহিনী নিয়ে উপন্যাস লিখে যে ব্যক্তিটি খ্যাতিলাভ করেছেন তিনি হলেন, স্যার হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড। হেনরি রাইডার মাত্র ১৯ বছর বয়সে নেটাল সরকারের চাকরি নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকায় চলে যান। দীর্ঘ ৬ বছর পর তিনি আবার ফিরে আসেন জন্মভূমি ইংল্যান্ডে। এর পর তিনি আইনশাস্ত্রে লেখাপড়া শুরু করেন। এ সময় তিনি লিখতে থাকেন অ্যাডভেঞ্চার কাহিনী। ‘কিং সলোমন্স মাইন্স’ নামে একটি বই লিখে বিখ্যাত হয়ে যান তিনি। ”অ্যালান কোয়াটারমেইন” হেনরি রাইডার হ্যাগার্ড রচিত কিং সলোমন'স মাইন এবং এর পূর্ববর্তী ও পরবর্তী বিভিন্ন খণ্ডের প্রধান চরিত্র। অ্যালান কোয়াটারমেইন এই সিরিজের একটি বইয়েরও নাম ছিল। কোয়াটারমেইন চরিত্রটি আফ্রিকার দক্ষিণাংশের একজন ইংরেজ পেশাদার পশু শিকারী এবং ব্যবসায়ী। তিনি সভ্যতার আলো অন্ধকার মহাদেশে ছড়িয়ে দেবার ঔপনিবেশিক প্রচেষ্টার সমর্থক, এবং আফ্রিকান অধিবাসীদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে তাদের নিজেদের মত থাকা সমর্থন করেন। কোয়াটারমেইনের কাছে ইংরেজ শহর এবং আবহাওয়া অসহ্য বোধ হয়, কারন তিনি একজন বহির্মুখী মানুষ। যে আফ্রিকাতে তিনি ছোটবেলায় তার বিপত্নীক খ্রিষ্ট ধর্ম প্রচারক বাবার আদরে মানুষ হয়েছেন, সেখানেই তিনি সময় কাটাতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন। প্রথম দিকের উপন্যাসগুলোতে আফ্রিকান আদিবাসীরা কোয়াটারমেইনকে মাকুমাজন বলে সম্বোধন করে, যার অর্থ "রাতের প্রহরী", যেটা তার নৈশকালীন অভ্যাস এবং তীক্ষ্ণ বিবেচনাবোধের পরিচায়ক। পরবর্তীকালে মাকুমাজনকে মাকুমাজনার সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে দেখান হয়েছে, যার অর্থ "উৎকৃষ্ট মানব"। কোয়াটারমেইনের পার্শ্বচর হিসেবে প্রায়ই লক্ষ্য করা যায় হটেনটট হানস এর উপস্থিতি, যে কিনা একজন বিচক্ষন এবং দায়িত্বশীল ভৃত্য। তার শ্লেষাত্মক উক্তিগুলোতে ইউরোপিয়ান আদব কায়দার প্রতি তাচ্ছিল্য প্রকাশ পায়। তার শেষ অভিযানে কোয়াটারমেইনের সঙ্গী হন দুজন ব্রিটিশ, স্যার হেনরি কার্টিস ও রয়াল নেভির ক্যাপ্টেন জন গুড এবং আফ্রিকান বন্ধু উমস্লপোগাস।কোয়াটারমেইনের পরিবারের ব্যাপারে খুব সামান্যই জানা যায়। তিমি ডারবানে বাস করেন, যা দক্ষিণ আফ্রিকার নাটালের অন্তর্গত। দুবার বিয়ে করা সত্ত্বেও কোনবারই বেশিদিন স্ত্রীর সাহচর্য ভোগ করতে পারেননি। খুব দ্রুত তা স্ত্রীরা পৃথিবী ত্যাগ করেন। তাঁর আদরের পুত্র ছিল হ্যারি। হ্যারির মৃত্যুতে তিনি গভীরভাবে শোকাচ্ছন্ন হন, যার প্রকাশ ফুটে উঠে অ্যালান কোয়াটারমেইন নামের উপন্যাসে। হ্যারি কোয়াটারমেইন চিকিৎসাবিদ্যার শিক্ষার্থী হিসেবে একটি হাসপাতালে কর্মরত অবস্থায় গুটিবসন্তে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করে। লেখক কোয়াটারমেইনের উপন্যাসগুলো ধারাবাহিকভাবে না লেখার কারনে কিছু জায়গায় ত্রুটি দেখা দিয়েছে।”অ্যালান কোয়াটারমেইন” সিরিজের বই “হিউ-হিউ অর দ্য মনস্টার”। এই বইতে এক ঝড়ের রাতে পাহাড়ের গুহায় আশ্রয় নিয়েছিল অ্যালানকে আশ্রয় নিতে দেখা যায়। গুহার গভীরে হ্যান্স তাকে নিয়ে যায় এক দানবের দানবীয় দেয়ালচিত্র দেখাতে। সেই দেয়ালচিত্র দেখে হতভম্ব হয়ে যাওযায় চির কৌতূহলী অ্যালান সেটার উৎস জানতে যায় জুলু ল্যাণ্ডের মহান যাদুকর, ‘দ্বার উন্মোচক, জিকালি”- র কাছে। এবং বরাবরের মত জিকালির পাতা জালে পা দেয় অ্যালান। ফলাফল, এই অভিযান। হ্যাগার্ডের কোয়াটারমেইন উপন্যাসগুলোর মধ্যে কয়েকটি গুচ্ছবিহীন হলেও এই উপন্যাসগুলোর মধ্যে দুটি পৃথক ধারা লক্ষণীয়। যুলু ত্রয়ীর অন্তর্গত মারী (১৯১২), চাইল্ড অভ স্টর্ম (১৯১৩) এবং ফিনিশডে (১৯১৭) দেখা যায়, যিকালির প্রতিশোধের ফাঁদে আটকা পরেন কোয়াটারমেইন। যিকালি ছিল এক বামন ওঝা যে পরিচিত ছিল "যার কখনো জন্ম হওয়া উচিত ছিল না" এবং " "পথোন্মোচনকারী" হিসেবে। যিকালি, যুলু সেনযাঙ্গাকোনা রাজবংশের উৎখাতের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত সফলকামও হয়।
Thriller
1
রিভিউঃ জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জনগণের মুক্তি ১৯০৫-৪৭ লেখকঃ সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী আনু মোহাম্মদের একটা লেখায় পড়েছিলাম, ইতিহাস মানে কিছু তারিখ নয়, ইতিহাস মানে স্থির অপরিবর্তনীয় ঘটনা আর চরিত্রও নয়। সে কারণেই একটি নির্দিষ্ট সময়ের ‘ইতিহাস’ এক জায়গায় আটকে থাকে না। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে, বর্তমান সময়ের পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে, পুরোনো কাল, পাত্র-পাত্রীর চেহারাও নতুন নতুনভাবে নির্মিত হতে থাকে। মানুষ বর্তমানে দাঁড়িয়েই তার অতীতকে বিশ্লেষণ করে। অতীত তাই বর্তমানের জ্ঞান, মতাদর্শ, ব্যক্তির সামাজিক অবস্থান দ্বারা সজ্জিত হয়। দীর্ঘ ১০ বছর ধরে লেখা, কয়েক বছর ধরে ধারাবাহিকভাবে প্রকাশিত, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জনগণের মুক্তি: ১৯০৫-৪৭ ইতিহাসের উপাদানে সাজানো হলেও তাই প্রথাগত ইতিহাসগ্রন্থ নয়। ১৯০৫ ও ১৯৪৭—এই দুই পর্বের বঙ্গভঙ্গের মধ্যবর্তী সময়কালের ঘটনাবলির বিকাশধারা এবং এই সময়ের রাজনৈতিক নেতা, লেখক, চিন্তাবিদদের ভূমিকার ওপর বিশদ পর্যালোচনা দিয়ে সমৃদ্ধ এই বই। কংগ্রেস, মুসলিম লীগ, হিন্দু মহাসভা, কমিউনিস্ট পার্টিসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও গ্রুপ; গান্ধী, নেহরু, জিন্নাহ, সুভাষ, মাওলানা আজাদ, ফজলুল হক, সোহরাওয়ার্দী, আবুল হাশিম, শরৎ বসু, হবীবুল্লাহ বাহার, মাওলানা আকরাম খাঁসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক নেতা ও সংগঠক; বঙ্কিমচন্দ্র, মাইকেল মধুসূদন, রবীন্দ্রনাথ, নজরুল, ইকবাল, শরৎচন্দ্র, মীর মোশাররফসহ বিভিন্ন লেখক-শিল্পীর কাজের পর্যালোচনা বইটিকে একটি সামগ্রিক রূপ দিয়েছে। এ ছাড়া আছে বিভিন্ন সংবাদপত্র, সাময়িকীর প্রসঙ্গ। প্রারম্ভিক ও উপসংহার ছাড়া মোট ১৪টি পরিচ্ছেদ বা অধ্যায় আছে। এগুলো হলো: ‘বঙ্গভঙ্গ এবং তারপর’, ‘জাতীয়তাবাদের ধারণা ও প্রবণতা’, ‘গান্ধীর চিন্তা ও ভূমিকা’, ‘জিন্নাহ, দ্বিজাতি তত্ত্ব এবং সংখ্যালঘুর ভাগ্য’, ‘দেশভাঙার তৎপরতা ও দায়দায়িত্ব’, ‘স্বাধীনতা বনাম ঔপনিবেশিক স্বায়ত্তশাসন’, ‘সুভাষ বসুর রাজনীতি এবং জাতীয়তাবাদের সীমা’, ‘তিনদল, আবার একদলও’, ‘দেশভাগের প্রক্রিয়া’, ‘ইতিহাসের কৌতুক এবং পরাজিতের স্বাধীনতা’, ‘বাংলাভাগ’, ‘মঞ্চে, মঞ্চের পেছনে এবং বাইরে’, এবং ‘জনগণের মুক্তির প্রশ্ন’। রুশ বিপ্লবের বহুমুখী প্রভাব বইটির নানা চরিত্র বিশ্লেষণের মধ্যে পাওয়া যায়। গোয়েন্দা সংস্থার রিপোর্ট সরকারকে বলশেভিকবাদের বিপদ সম্পর্কে সতর্ক করে দিয়েছে। সে জন্য ‘ব্রিটিশ আমলারা কংগ্রেসের ভয়ে ততটা ভীত ছিল না যতটা উৎকণ্ঠিত ছিল বলশেভিক প্রভাবের সম্ভাব্য বিস্তার নিয়ে। আর সে জন্যই খুবই ক্ষুদ্র হওয়া সত্ত্বেও কমিউনিস্ট পার্টিকে তার যাত্রা শুরুর মুহূর্ত ১৯২০ সাল থেকেই নানা রকম নিপীড়নের মুখে পড়তে হয়েছে।’ (পৃ. ১১৩)। নিপীড়ন আর তার সঙ্গে নিজেদের আত্মঘাতী ভ্রান্তি দুর্বল করে দিয়েছে জনপন্থী রাজনীতির ভিত্তি। এসব সত্বেও লেখক ঠিকই ‘১৯০৫ থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত সময়কাল’ অত্যন্ত ঘটনাবহুল এবং ‘বিভিন্ন রকমের প্রবণতা’, ‘দ্বন্দ্ব এবং স্ববিরোধিতা’য় পূর্ণ বলে চিহ্নিত করেছেন। বলেছেন, ‘সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াইটির পক্ষে একই সঙ্গে পুঁজিবাদবিরোধী ও সামন্তবাদবিরোধী হওয়া দরকার ছিল, হয়নি বলে সে লড়াই জনমুক্তি নিশ্চিত করতে পারেনি।’ (পৃ. ৮০০)। কেন পারেনি তার অনুসন্ধান চেষ্টাই জাতীয়তাবাদ, সাম্প্রদায়িকতা ও জনগণের মুক্তি: ১৯০৫-৪৭ শিরোনামের এই গ্রন্থের মূল মনোযোগের বিষয়। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ বইতে লেখক জাতীয়তাবাদী আন্দোলন উপমহাদেশে যে কত ভাবে তাৎপর্যময় হয়েও কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জনে ব্যর্থ হয়েছে, তা বিশ্লেষণ করেছেন। তিনি অনুসন্ধান করেছেন এই চেতনার স্বরূপ, অর্জন ও ব্যর্থতার দিকগুলো। বলেছেন, জাতীয়তাবাদ জনগণের সকল ধরনের মুক্তি আনয়নে কাঙ্ক্ষিত লক্ষ্য অর্জন করে না। তার কারণও বিশ্লেষণ করেছেন তিনি। জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের বিকাশে এবং আন্দোলনকে প্রবহমান রাখার জন্য (১৯০৫-৪৭ কালপর্বে) ক্ষুদ্র-বৃহৎ যে সব রাজনৈতিক দল সক্রিয় ছিল, তাদের ভূমিকা বিশ্লেষণের পাশাপাশি সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী অসংখ্য রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের ভূমিকার কথাও বিস্তারিত আলোচনা করেছেন। তাঁদের আদর্শ কর্মপ্রবাহ উল্লেখের পাশাপাশি এই মানুষদের মতাদর্শ, পারস্পরিক দ্বন্দ্ব এবং পরস্পর-বিরোধিতা দেশের রাজনৈতিক আবহে বৃহত্তর বোধ ও সুদূরপ্রসারী চেতনায় পথ প্রদর্শন করতে পারেনি, এমনকী চল্লিশের বামপন্থী আন্দোলন মানুষের কল্যাণ ও শোষণ মুক্তিতে নতুন মাত্রা সঞ্চার করা সত্ত্বেও নানা কারণে মুখ্য সঞ্চালক শক্তিতে পরিণত হতে পারেনি। অসংখ্য রাজনৈতিক দল, রাজনীতিবিদ, সমাজসংস্কারক, চিন্তাবিদ ও সাহিত্যিকের ভূমিকা উল্লেখ করে তিনি তাঁদের চিন্তা ও চেতনার সীমাবদ্ধতার কথা তুলে ধরেছেন। এই বিশ্লেষণে জনগণের অবস্থান কোথায় ছিল এবং রাজনৈতিক আন্দোলনের চালিকা ও নিয়ন্তা হয়েও কেন জনগণের আকাঙ্ক্ষা ষড়যন্ত্রের চোরাবালিতে হারিয়ে গেল ও বিদেশি প্রভুর কূটচালে পরাস্ত হল, লেখক সেই অত্যন্ত জরুরি বিষয়টির ওপরে আলোকপাত করেছেন। উল্লিখিত সময়খণ্ডে রাজনীতিবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি ও আন্দোলন কেন পথভ্রষ্ট হল এবং জনগণের মুক্তি-আকাঙ্ক্ষা ও বৈপ্লবিক চেতনা গুরুত্ববহ হয়ে উঠল না, তা গভীর ভাবে এ গ্রন্থে আলোচিত। সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর এই গ্রন্থে বিস্তৃত পটভূমি ও পরিসরে রাজনৈতিক বিষয়াবলি প্রাধান্য পেলেও প্রকৃত অর্থে জনগণের মুক্তির পথ প্রসঙ্গটি বড় ভাবে বিশ্লেষিত হয়েছে। জাতীয়তাবাদ প্রশ্নে এত আগ্রহোদ্দীপক, জিজ্ঞাসা-জাগানিয়া গ্রন্থ এর আগে আমাদের চোখে পড়েনি। আগ্রহী পাঠক (১৯০৫-৪৭ কালপর্বের) রাজনৈতিক আন্দোলনের সঙ্গে সামাজিক ও সাহিত্যপ্রয়াসের নানা প্রবণতা সম্পর্কে জানতে পারবেন। ঐতিহাসিক, সামাজিক ও সাহিত্যিক দৃষ্টিভঙ্গিকে ধারণ করে জাতীয়তাবাদ সাম্প্রদায়িকতা ও দেশভাগ নিয়ে নবীন আলোকদীপ্ত যে-সব গবেষণা হচ্ছে, সিরাজুল ইসলাম চৌধুরীর এ গ্রন্থ সেক্ষেত্রে নবীন মাত্রা যুক্ত করবে। (তথ্য ও কথা সংগ্রহীত)
War
5
"নিষ্পত্তি" ত্রিভুজ প্রেমের ভালবাসা, সাংসারিক জীবন, রক্তের সম্পর্ক এবং সর্বোপরি জীবনের ছোট ছোট দুঃখ বেদনা হাসি আনন্দের উপন্যাস। ঔষুধ ব্যবসায়ী শামীমের সবচাইতে কাছের বন্ধু তার বোন মুনিয়া এবং ভালবাসার মানুষ নাহার যখন জীবন থেকে ঘটনা চক্রে হারিয়ে যায় তখন ই সে পাশে পায় ফারিয়া কে । ফারিয়া কে শামীম কি ভালবাসত ? নাহার কে ভুলতে পেরেছিল ? নাকি শুধুই সেটা ছিল এক নির্ভরতা ? এমনই এক দ্বিধা কাজ করেছে পাঠক হিসেবে । শামীম আর ফারিয়া এক সময় বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়। শামীম তার সবটূকূ দিয়েই চেষ্টা করে ফারিয়া কে সুখী করার কিন্তু ফারিয়ার মনে হয় হয়ত নাহারের যায়গাটা সে বে দখল করে আছে । সন্তান জন্ম দানের পর অসুস্থ হয়ে স্বামী , সন্তান এবং পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে ফারিয়া এবং তার আগেই সে তার সন্তান কে দিয়ে যায় নাহারের হাতে , নাহারের হাতে পরিয়ে দিয়ে যায় অনেক বছর আগে নাহারের ই জন্য শামীমের কেনা ব্রেসলেট । উপন্যাসে আরও আছে শিশির , নীলু, জব্বার ছাড়াও আরও নানা চরিত্র । লেখক অত্যন্ত যত্নের সাথে সব চরিত্রের আবেগ , অনুভূতি আর টানাপোড়ান উপস্থাপন করেছেন সহজ ভাষায় যা পাঠক ধরে রাখার জন্য যথেষ্ট । জীবনে প্রতিনিয়ত আমরা ছোট, বড় কত ঘটনার সাথে প্রতিনিয়ত পরিচিত হই তবে সেসব ঘটনা যত্নের সাথে ভেবে দেখাড়, কাছের মানুষদের অনুভূতির মূল্য দেওয়ার সময় আমরা পাইনা । লেখক তার বইয়ের প্রতিটি পাতায় সকল অনুভূতি গুলো সুন্দর ভাবে উপস্থাপন করেছেন যা পড়ার পর হৃদয়ে অনুভূত হয় ।
Fiction
0
অনেক দিন ধরেই হালকা ধরনের ভুতের বই খুজচ্ছিলাম,এই বইটি একদম পারফেক্ট। যেই গল্পগুলো আছে সেগুলো হলো পিশাচিনী, রহমত চাচার এক রাত, সহযাত্রী, বন্ধ ঘর, গাড়ি, মুগাবালি, নেকড়ে, সুতরন্তু আর মুতুয়াল পির। পিশাচিনী কালো জাদু নিয়ে একটু অন্যরকম গল্প, এটি মোটেই গা ছমছমে ভুতুরে গল্প নয় বরঞ্চ থ্রিলারের গন্ধটা বেশি পাওয়া যায়। রহমত চাচার এক রাত একদম টিপিকাল গল্প খুব একটা ভালো লাগেনি। সহযাত্রী মেডিকেল থ্রিলার টাইপের অতটা ভুতুড়ে ভাব নেই। বন্ধ ঘর গল্পটা শরদিন্দু স্টাইলে লেখা যদিও ভালো লেগেছে, থ্রিলার সাসপেন্স গল্প। গাড়ি গল্পটা সম্ভবত কোনো বিদেশী গল্পের ছায়া অবলম্বনে লেখা তবে মন্দ লাগেনি, সেই জেনেরিক টাইপের ব্রিটিশ ছোয়ার মত ভুতুড়ে গাড়ি। মুগাবালি আত্মা ডাকা নিয়ে একটি গল্প যা একটু ভুতুড়ে লেগেছে তবে সাংঘাতিক ভয়ংকর কিছু না। নেকড়ে যদিও ওয়ার উলফের গল্প কিন্তু গল্পের প্লটটা বেশ ইন্টারেষ্টিং। ভালো লাগার গল্পের মধ্যে সুতরন্তু একটা, ব্ল্যাক ম্যাজিক আর বৈজ্ঞানিক বিশ্লেষণের খুবই ইন্টারেষ্টিং মিশ্রন আর হ্যা এই গল্পটা একটু ভুতুড়ে। সবচেয়ে ভালো লেগেছে মুতুয়াল পির, যদিও নামের মত গল্পের প্লটও খুবই আজব ধরনের ভুতুড়ে না হলেও। এই গল্পটি কিছুটা শেষ পাতে মিষ্টান্নের মত।
Thriller
1
একটা কথা কিন্তু মানতেই হবে। হুমায়ূন আহমেদের প্রায় সব নারীচরিত্রই রহস্যময়। রহস্যময়ও ঠিক না, আসলে তারা আর দশটা সাধারণ মেয়ের মত না। তারা জনসম্মুখে উদ্ভট কাজ করতে কুণ্ঠাবোধ করেনা। এই গল্পের নারীচরিত্র তরুও ঠিক সেরকম একটি মেয়ে। ওর ভালো নাম শামসুন নাহার। তরুর বাবা তরুকে রেগে গেলে শামসুন নাহার নামে ডাকেন। আজকেও ডাকছেন। নিশ্চয় তরু এমন কিছু করেছে যেটা খুবই গুরুতর। অন্তত ওর বাবার চোখে তো গুরুতর হবেই। গুরুতর ব্যাপারটি হলো ওর টেবিলে সিগারেটের প্যাকেট পাওয়া গেছে। যারা হুমায়ূন আহমেদের বই নিয়মিত পড়েন তাদের কাছে ব্যাপারটা স্বাভাবিক লাগতেই পারে। আগেই বলেছি উনার নারীচরিত্রগুলো একটু উদ্ভট টাইপেরই হয়। এই গল্পে একটা রহস্য দেখা যায়। তরুর বাবা প্রথমে তরুর মাকে বিয়ে করেন। সে মারা যাবার পর তরুর খালাকে বিয়ে করেন। সেও কয়দিন পর মারা যায়। তরুর কাছে ব্যাপারটা রহস্যময় মনে হয়। যদিও তারা বাবা প্রতিবছর ঘটা করেই দুই স্ত্রীর মৃত্যুবার্ষিকী পালন করেন। তরুদের ছাদের ঘরে ওসমান চাচা নামে এক পঙ্গু ব্যক্তি থাকে। স্ত্রী সন্তান ফেলে উনি কেন তরুদের বাসায় থাকেন এটাও তরুর কাছে রহস্যময় মনে হয়। তরু একটা ডিটেক্টিভ উপন্যাস লিখছে। উপন্যাসের প্লটটা অনেকটা বাস্তবের মতই। প্লট টা ওকে দিয়েছে ওসমান চাচা। তিনি এত থাকতে এরকম একটা প্লটই বা কেন দিলেন? ব্যাপারটা রহস্যময় নয়? তরুর চোখে রহস্য সমাধান করার তৃষ্ণা। হুমায়ুণ আহমেদের এই টাইপের বই পড়ার সময় খুব ভালো লাগে। কিন্তু পরবর্তীতে দাগ ফেলে যাওয়ার মত কিছুনা। যতক্ষণ পড়বেন ততক্ষণ ভালো লাগবে। চরিত্রগুলো মাথায় ঘুরবে, কিন্তু পড়া শেষ তো সব শেষ। কিছু বই আছেনা, পড়ার পর সপ্তাহখানেক মাথার মধ্যে ঘুরতে থাকে? চরিত্রগুলো জ্যান্ত মনে হয়? এটা সেরকম বই না। শেষ মানেই শেষ, আপনাকে আর জ্বালাবে না। তবে এটুকু জোড় গলায় বলা যায়, পড়ার সময় বোরড হবেন না। যতক্ষণ পড়বেন ততক্ষণ মন আচ্ছন্ন হয়ে থাকবে। বইয়ের প্রচ্চদটা ভালো লেগেছে খুব। বাধাইও ভালো ছিল।
Fiction
0
এ দেশে বিভিন্ন সময়ে গড়ে উঠেছে অনেক রাজনৈতিক দল। এদের মধ্যে নানা দিক থেকেই আওয়ামী লীগ ব্যতিক্রম। আওয়ামী লীগ পুরোনো একটি দল। বিশাল এর ক্যানভাস। আওয়ামী লীগের ইতিহাস আলোচনা করতে গেলে অবধারিতভাবে চলে আসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নাম। একজন ব্যক্তি, একটি রাজনৈতিক দল এবং একটি দেশ যখন এক মোহনায় মিশে যায়, তখন তাদের আলাদা করে দেখা বেশ কঠিন। নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে দলটি একসময় হয়ে উঠেছে রাজনীতির মূলধারা এবং ধীরে ধীরে এর নেপথ্য থেকে উঠে এসেছে একটি জনগোষ্ঠীর জেগে ওঠার গল্প। স্মৃতি-বিস্মৃতির ঝাঁপি খুলে গবেষক মহিউদ্দিন আহমদ ছেকে তুলেছেন এই দলের উত্থানপর্ব।
Political
3
মোট ৬ টি গল্প নিয়ে লেখা বইটি। বইয়ের গল্প কথক জাফর ইকবাল স্যার নিজেই। জাফর ইকবাল স্যারের সাথে বিজ্ঞানী সফদর আলীর পরিচয় এক হোটেলে জিলাপি খেতে গিয়ে। জিলাপি ঠান্ডা করার জন্য বিশেষ এক ধরনের ফ্যান তৈরী করেছেন সফদর আলী। অনেক সময় নিয়ে বসে খাওয়ার মতো সময় তার হাতে নেই। সেই ফ্যান দিয়ে ঠান্ডা করে জিলাপী খেয়ে পড়িমড়ি করে ছুট। জাফর ইকবাল স্যার সেই ফ্যান দেখে অবাক। বুঝতে পারলেন লোকটা বেশ মজার। আসলেই তো, জিলাপি ঠান্ডা করার জন্য ফ্যান, বৃষ্টির পানি থেকে চশমার গ্লাস মুছার জন্য ওয়াইপার লাগিয়ে ঘুরেন, জামা-কাপড় মিনিটের মাঝে শুকানোর জন্যও উপায় আছে। যে মানুষ এতো সুন্দর জিনিস আবিষ্কার করতে পারে অবশ্যই সে অন্যদের থেকে আলাদা। এভাবেই তাদের দুজনের পরিচয় হয়। এরপর একদিন সফদর আলী জাফর ইকবাল স্যারের কাছে বিরিয়ানি তৈরীর রেসিপি চায়। গিনিপিগরা সেই বিরিয়ানি রান্না করবে। সেই বিরিয়ানি রান্না নিয়েই লেখা প্রথম গল্প 'বিরিয়ানি'! সফদর আলীর দরকার একজন সহকারী। তাই একটা বানর ট্রেনিং দিয়ে নিজের সহকারী বানাতে চান। সেই মজার গল্প নিয়েই তৈরী 'জংবাহাদুর'! হটাৎ সফদর আলীর মাথায় আসে গাছ দিয়ে একটা গড়ি বানাবেন। যে গাছ গাড়ির সাহায্যে হাটঁবে, ঘুরবে আর তৈরী করবে নিজের খাবার। কিন্তু এটা কি সম্ভব? "গাছগাড়ি" গল্প পড়লেই বুঝা যাবে গাছগাড়ি তৈরীর কাহিনী! "পীরবাবা" গল্পে পীরের জোচ্চুরির রহস্যের সমাধান নিয়ে লেখা। এসব কাহিনী করে প্রচন্ড দূর্বল। ছুটি কাটাতে গেলেন কক্সবাজার। কিন্তু ছুটি কাটানো তার কপালে নেই। তাইতো ছুটলেন হেরোইন কারবারিদের পিছনে। সেই গল্প নিয়েই লেখা 'হোরোইন কারবারি"'! আর শেষ গল্প লেখা মোরগ নিয়ে। মোরগ নিয়ে গল্প হয় নাকি? হ্যাঁ হয়! সফদর আলীর বইয়ের শেষ গল্প মোরগ নিয়েই!
Science-Fiction
4
অশাধারন...। বইটি পরার অনুরোধ রইলো...।
Fiction
0
“তারিখ-ই-বঙ্গালা-ই মহাবত জঙি” বইটি বাংলা সাহিত্যে এক অনন্য নিদর্শন। খোদ ফারসি থেকে দেশের বিশিষ্ট প্রত্নতত্ত্ব ও ইতিহাসবিদ আবুল কালাম মোহাম্মদ যাকারিয়ার অনুবাদ করা তারিখ-ই বঙ্গালা-ই মহাবত জঙি-তে ধরা আছে বাংলার নবাবি আমলের শেষ অধ্যায়ের প্রায় বিস্তারিত বিবরণ।বইটির লেখক ইউচসুফ আলী খান ছিলেন আলিবর্দি খানের অন্ত্রং বন্ধু ও বিশ্বস্ত সেনাপতি।এ বইয়ে বাংলার নবাবি আমলের এমন সব বর্ণনা আছে, যা সমসাময়িক অন্য কোনো গ্রন্থে পাওয়া যায় না। লেখক ইউসুফ আলি খান ছিলেন বর্ণিত বেশির ভাগ ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। নবাব আলিবর্দি খানের প্রথম জীবন, তাঁর পরিবারের বিভিন্ন সদস্য ও ব্যক্তিগত অনুচরদের সম্পর্কে বর্ণ দিয়েছেন। তিনি এ বইয়ে। সেই সঙ্গে রয়েছে মারাঠাদের সঙ্গে আলিবর্দির যুগব্যাপী সংঘাত, সিরাজ-উদ-দৌলার মৃত্যুর বিবরণও। পরবর্তীকালে ফারসি ভাষায় লেখা নবাবি আমলের অনেক ইতিহাসগন্থের তথ্য আসলে এ বইটি থেকেই নেওয়া হয়েছে।তারিখ-ই-বঙ্গালা-ই মহাবত জঙি” লেখকের বেশ পরিচিত একটি বই।এই বইটিতে লেখক সমসাময়িক ঘটনা সম্পর্কে এমন সব বর্ণনা করেছেন যা অন্য কোন সমসাময়িক গ্রন্থে পাওয়া যায় না।এটি আমি মনে করি ইতিহাসের প্রামান্য সাক্ষী।পাঠক বইটিতে পাবেন মধ্য যুগের বেশ কিছু ইতিহাস যা হয়ত আপনার অজানা ছিল।বইটি ইতিহাস নিয়ে যারা পড়ছেন তাদের জন্যও বেশ উপকারী হবে বলে আমি মনে করি।অনেক তথ্য সমৃদ্ধ এই বইটি আপনার ভাল লাগাকে এবং বাংলা ইতিহাস সম্পর্কিত গানকে আরও প্রসার করবে।তাই পাঠকদের বলব মিস করবেন না পড়তে।
War
5
হুমায়ূন আহমেদের বইয়ের চরিত্রগুলো আমাদের এত প্রিয় হবার কারণ বোধ হয় চরিত্রগুলো আমাদের খুব পরিচিত। গল্পের কাহিনিটাও আমাদের জীবন থেকেই নেওয়া। চরিত্রগুলো আমাদের আশেপাশে ঘোরাফেরা করে, গেঁথে যায় আমাদের অন্তঃস্থলে। হুমায়ূন আহমেদের লেখনীর আরেকটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পুরো বইটাকে লেখা দিয়ে কেমন একটা মায়ার চাদরে জড়িয়ে রাখেন, কেমন একটা মায়ময় ওম ওম ভাব! রুনু,ঝুনু, মন্টু, খোকা, রাবেয়া আপা - এ চরিতগুলো তো আমরাই। কিংবা আমাদের পাশের বাড়ির অতি পরিচিত মানুষজন। চিরকালীন মফস্বল সমাজের এমন জীবন্ত, নিটোল আখ্যান আর ক'জন ফাঁদতে পেরেছেন! 'শঙ্খনীল কারাগার'-এর চরিত্রগুলো হৃদয়ের গভীরে কোথায় যেন অনুরণিত করে যায়, উদাস করে যায় মনটাকে। নিজের অজান্তে, সঙ্গোপনে হাহাকার বেরিয়ে আসে মানুষগুলোর জন্য। ইচ্ছা করে গলা ছেড়ে বলে ওঠি- "দিতে পারো একশো ফানুস এনে? আজন্ম সলজ্জ সাধ একদিন আকাশে কিছু ফানুস উড়াই।"
Fiction
0
The great book
Political
3
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা #Book_Review বইয়ের নামঃ মধ্যবিত্ত বইয়ের ধরণঃ সমকালীন উপন্যাস বইয়ের লেখকঃ কিঙ্কর আহসান প্রচ্ছদঃ মেহেদি হাসান প্রকাশকালঃ অমর একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৭ প্রকাশনীঃ বর্ষাদুপুর প্রকাশনী পৃষ্ঠাঃ ১১২ মূদ্রিত মূল্যঃ ২০০ টাকা লেখক পরিচিতিঃ লেখকের নাম কিঙ্কর আহসান। তার সম্পর্কে এক কথায় বলতে গেলে তার বুবুর কাছ থেকে শোনা কথাটাই বলতে হবে, ‘মাটির মানুষ ছেলেটা তবুও আকাশে ডানা মেলে ওড়ার আজন্ম সাধ তার।’লেখকের জন্মস্থান বা বেড়ে ওঠা সম্পর্কে তেমন কিছু জানা যায় না। তবে তিনি লেখালেখির পাশাপাশি অনেক সৃষ্টিশীল কাজের সাথে যুক্ত ছিলেন। ‘পাতার নৌকা’, ‘ক্রিং ক্রিং’ ও ‘জলপরানি’ টেলিফিল্মের কাজ করে হয়েছেন প্রশংসিত। ‘কে হতে চায় কোটিপতি’ টিভি শো’র সহকারী স্ক্রিপ্ট রাইটারের কাজ করেছেন। এছাড়া ‘মার্কস অলরাউন্ডার’, ‘হাসতে মানা’, ‘হান্ডসাম দি আলটিমেট ম্যান পাওয়ার্ড বাই বাংলাদেশ নেভী’ ও বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশন আয়োজিত ‘বাংলাদেশ সুপার লীগ-গ্রান্ড লোগো আনভেইলিং’র প্রধান স্ক্রিপ্ট রাইটার ছিলেন। তাছাড়া তার আরো অনেক যোগ্যতা আছে। লেখক হিসেবে তিনি এখন পর্যন্ত ৭টি বইয়ের অধিকারী। সার-সংক্ষেপঃ মধ্যবিত্ত উপন্যাসটি উত্তম পুরুষে লেখা। একজন গল্পকথক পুরো উপন্যাসটি বর্ণনা করেছেন। উপন্যাসে গল্পকথকের নাম উল্লেখ করা নেই। উপন্যাসটির গল্প এগিয়েছে গল্পকথকের অসুস্থ মা’কে ঘীরে। এখানে দেখা যায়, গল্পকথক তার পরিবারসহ কোলকাতায় আসেন তার মায়ের চিকিৎসা করাতে। মধ্যবিত্ত পরিবারের ছেলে তিনি। তাই জীবনের সর্বস্ব দিয়ে তারা আসেন তার মায়ের চিকিৎসা করতে। আর সেখানেই দৈনন্দিন প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে ভেসে একদল মধ্যবিত্ত জীবনের কাহিনী! পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ “কোলাহলের কারাগারে- দেশলাই বাকসো, মুঠো ভরা কুয়াশা, মোহর জমাচ্ছো?” সুপ্রিয় পাঠক, আপনাকে যদি কেউ ১ টা মিষ্টি খাইয়ে বলে, বলুন তো স্বাদ কেমন? আপনি কি বলবেন? মিষ্টি? কিন্তু মিষ্টি তো মিষ্টি হবেই। মিষ্টির স্বাদ মিষ্টি বললে তো আসল অনুভূতিটা আপনি প্রকাশ করতে পারলেন না। তাহলে কি বলবেন? আসলে কিছুই বলার নেই। একটি মিষ্টির স্বাদ কেমন তা কখনো বলে বোঝানো সম্ভব না। শুধুমাত্র চোখ বন্ধ করে আরামে স্বাদটা অনুভব করা যায়। আলোচ্য মধ্যবিত্তের গল্পটা ঠিক সেই মিষ্টির মত। স্বাদটা বলে বোঝানো যায় না, শুধুমাত্র অনুভব করা যায়। লেখক কিঙ্কর আহসানের বই এই প্রথমবার পড়লাম। চমৎকার লেখনী। কিছুটা ভিন্নতরও। ছোট ছোট বাক্য ও ঘটনার মধ্য দিয়ে লেখক অনেক কথা বলতে পারেন। তাছাড়া একটি দৃশ্য নিয়ে বেশি ত্যানাও পেচাতে দেখিনি তাকে। বাহুল্য বর্জিত লেখা। বাস্তবতার ছোঁয়াও ছিল বেশ উল্লেখ করার মত। তবে লেখক গল্পের নায়ককে সহনশীল করতে গিয়ে কিছু কিছু জায়গায় অনুভূতিহীন আবার কিছু জায়াগায় কিছূটা ছেলেমানুষই করিয়েছেন বলে মনে হয়েছে আমার। গল্পের ছোট ছোট কিছু কথা ভালো লেগেছে। ঘটনার প্রবাহের মাঝে মাঝে লেখক মধ্যবিত্তদের কিছু দৈনন্দিন দিকও তুলে ধরেছেন। তাদের জীবন ধরণ, চিন্তা চেতনা, অভ্যাস ইত্যাদি দিক খুব অল্প কথায় বেশ সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন লেখক। কিন্তু এত কিছুর পরেও কিছু জায়গায় চোখে লেগেছে... গল্পের প্লটটা তৈরী হয়েছে কোলকাতাকে ঘীরে। ব্যাপারটা আমার ব্যক্তিগতভাবে ভালো লাগে নি। আমাদের দেশে কি মধ্যবিত্ত জীবনসংগ্রাম দেখা যায় না? গল্পের শেষে “বুনো” চরিত্রের সাথে গল্প কথকের একটি সম্পর্কের কথা উল্লেখ আছে। এবং সেখানে লেখাও আছে, যে গল্প কথক কিছুটা অপরাধবোধে ভুগছেন। অথচ গোটা উপন্যাসে সেরকম কোন ঘটনার উল্লেখ নেই। শেষের দিকটা তাই স্পষ্ট হয়নি আমার কাছে। বইয়ে বানান ও ছাপার ভূল ছিল বেশ চোখে পড়ার মত। “কোঠারি হাসপাতাল” কোথাও হয়েছে “কোটারি হাসপাতাল”, অপুদা হয়েছে অপু ভাই ইত্যাদি। এছাড়া বইয়ের অন্য সব দিকই প্রশংসা করার মত। বিশেষ করে প্রচ্ছদ ও অলংকরণ। বইয়ের প্রচ্ছদের ও ভেতরের প্রতি অধ্যায়ের শুরুর ছবি বেশ ভালো লেগেছে। তার উপর আরও মধু যোগ করেছে প্রতি অধ্যায়ের শুরুতে লেখা ২ লাইনের পংক্তি। লেখক ও প্রচ্ছদ শিল্পীকে সেজন্য জানাই বিশেষ ধন্যবাদ। সবশেষে তাই বলতে চাই, বইটি পড়ে দেখুন। বিশেষ করে মধ্যবিত্তরা। কথা দিচ্ছি, এক অদ্ভুত আয়না দেখতে পাবেন, যেখানে আপনার দিকে তাকিয়ে আছে আপনার নিজেরই প্রতিচ্ছবি! প্রিয় উক্তিঃ -“মধ্যবিত্ত ছেলেদের এমন হয়। তারা ঘরের বাইরে বের হতে ভয় পায়। বিদেশ তাদের কাছে অনেক দূর, ভয়ের আর অজানার... তারা তুচ্ছ জিনিসের প্রেমে পড়ে। নিজের ঘর, নিজের বাড়ি এইসব অনেক জরুরি বিষয় হয়ে ওঠে!” - “বাটা মধ্যবিত্তদের জুতো। এই জুতোর প্রতি মধ্যবিত্তদের এক ধরনের মোহ কাজ করে। ডিজাইন যাই হোক না কেন টেকে বেশিদিন। লং লাস্টিং বিষয়টাই মধ্যবিত্তদের জন্য সবচেয়ে জরুরী!” রেটিংঃ ৪/৫
Fiction
0
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ বাংলা সাহিত্যে নতুন সংযোজন একজন ডিটেকটিভ 'অলোকেশ' এবং 'জলপিপি' গোয়েন্দাকাহিনির প্রতি মানুষের আকর্ষণ দুর্নিবার ও সার্বজনীন। গোয়েন্দাকাহিনি বা ডিটেকটিভ কার্যক্রম সম্পর্কে দেখতে, শুনতে বা পড়তে কৌতূহল কম- এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া কষ্টসাধ্য। কারণ- কি যুবক, কি তরুণ, কি বৃদ্ধ সাহিত্যের এ শাখা প্রতি সবার আকর্ষণই যেন চিরকালীন৷ অন্যভাবেও বলা যায়, জনপ্রিয়তার নিরিখে গোয়েন্দা কাহিনী সবার উপর। এ গল্প গুলো মানুষকে যেমন আনন্দ দেয় তেমনই বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ সাধন করে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এক বা একাধিক খুনকে কেন্দ্র করেই গোয়েন্দা উপন্যাসগুলোর মূল প্লট গড়ে উঠে৷ তবে খুনের বাহিরেও বিচিত্র ঘটনাকে যেমন- গুম, দূর্ঘটনা, এটেম্পট টু মার্ডার কিংবা আরও জটিল কোনো বিষয় নিয়েও গোয়েন্দাকাহিনি রচিত হয়। কিন্তু গোয়েন্দাকাহিনির মূল আকর্ষণ অন্য জায়গায়। কাহিনিতে সংঘটিত অপরাধকে ঘিরে যে সাসপেন্স তৈরী হয়, এখানেই গোয়েন্দাকাহিনির চৌম্বককেন্দ্র। কেউ যখন কোনো গোয়েন্দাকাহিনি পড়া শুরু করে, এই সাসপেন্সকে কেন্দ্র করেই পাঠক ঘুরপাক খেতে থাকে এবং সাসপেক্টকে বের না করা পর্যন্ত উৎকণ্ঠায় থেকে পাঠে নিবিষ্ট থাকেন। বলে রাখা যায়, গোয়েন্দা শব্দটা থেকে ডিটেকটিভ শব্দটিতেই যেন একটু বেশি আকর্ষণ কাজ করে কিংবা একটু বেশি শ্রুতিমধুর। অরুণ কুমার বিশ্বাসের 'জলপিপি'তে এই শব্দটির নিয়মিত ব্যবহার পাঠকে শ্রুতিমধুর করে তুলেছে। বাংলাসাহিত্যে ডিটেকটিভ শব্দটা উচ্চারণ মাত্রই যেন ডিটেকটিভ ফেলুদার চিত্র কল্পনায় ভাসে। আবার এই ফেলুদার একজন আদর্শ আছেন। বিখ্যাত শার্লক হোমস-ই ফেলুদার আইডল। মজার ব্যাপার হলো, অরুণ কুমার বিশ্বাসের আবিষ্কার ডিটেকটিভ অলোকেশ রয়ের আদর্শ ফেলুদা এবং শার্লক হোমস- দুজনই। যেমন আমরা শার্লক হোমসের ডা. জন ওয়াটসন, ফেলুদার তোপসে নামক বন্ধু দেখতে পাই (পৃ: ১০৫)। তেমনি ডিটেকটিভ অলোকের বন্ধু শুভকেও দেখতে পাই। যদিও শার্লক হোমস, ফেলুদা এবং অলোক- একেকজনের প্রেক্ষাপট একেক রকমের, একেক ধরনের। অরুণ কুমার বিশ্বাসের গোয়েন্দাকাহিনি নির্ভর উপন্যাস 'জলপিপি'। জলপিপি একটা পাখির নাম। পাখিটার কার্যক্রমও একজন গোয়েন্দার মতোই। তবে সে প্রেমিকও৷ তাই ডিটেকটিভ উপন্যাসের নামের সাথে জলপিপি নামটা বেশ মানানসই বলা চলে। উপন্যাস 'জলপিপি' জুড়ানো হয়েছে গগন চৌধুরীর রহস্যজনক মৃত্যু নিয়ে। এটা কোনো হত্যাকান্ড নাকি স্রেফ আত্মহত্যা - এ প্রশ্নকে ঘিরেই একের এক ঘটনা এবং আধুনিক বা শহুরে সমাজের সাংসারিক জীবনের চরম বাস্তবতা ফুটে ওঠেছে। গগন চৌধুরীর মৃত্যু যদিও রহস্যময় এবং সেটার সমাধান করার দায়িত্ব ঝানু গোয়েন্দা অলোকেশ রয়ের, আমাদের নয়। বরং গগন চৌধুরীর মাধ্যমে লেখক সমাজের যে চিত্রটি তুলে ধরেছেন তার আলোচনা করাটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। গগন চৌধুরীর মৃত্যুর মতো লোকটির জীবনটাও যেম রহস্যময়! কারো কাছে তিনি পরম দয়ালু, কারো কাছে তিনি কর্পোরেট দুনিয়ার আইডল, কিংবা কারো কাছে তিনি চরম কুলাঙ্গার! আমাদের সমাজে হর হামেশাই এসব চরিত্রের সন্ধান মেলে। কিন্তু মুখ ফোটেনা কারও, শত অত্যাচারেও। কিভাবেই বা এমন মানুষগুলোর আসলরুপ সমাজে ধরা দিবে? ওদের হাত যে বিশাল লম্বা! অথবা ওরাই যে আবার পরম দানশীল! একটা পরম মানবতার কাজকে সাইনবোর্ড হিসেবে ব্যবহার করে কতশত অনৈতিক কাজে লিপ্ত এমন গংদের সংখ্যা বেশ লক্ষণীয়। গগন চৌধুরীদের ঘরে বাইরে প্রচুর স্ত্রীলোক থাকতে হয় রাখতে হয়। এমনকি স্ত্রীলোকের বাহিরেও নানান গলিঘুপচিতে ওদের যাতায়াত হয়৷ প্রয়োজন শেষে গগন চৌধুরীদের মাধ্যমে নির্মমভাবে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে হয়৷ যার বিচারকার্য কোর্ট পর্যন্ত গড়াতে সাহস পায় না। জলপিপিতে অহনার নির্মম মৃত্যু যেন সেই দৃশ্যটিরই জানান দেয়! (জলপিপি, পৃ: ৯০) অর্থেবিভোর চরিত্রহীন এই সমাজে গগন চৌধুরীদের স্ত্রীরাও ইচ্ছায় অনিচ্ছায় কোনো অংশেই কম যান না। একজনের ঘরে থেকে অন্যঘরে সংসার জুড়ানো। গগনের সুদর্শন স্ত্রী আনিলা কিংবা ভদ্র মহিলা আরজু বেগম আধুনিক শহুরে সংসারের আড়াল বাস্তবতার বহিঃপ্রকাশ! অপেক্ষায় থাকেন সুযোগের- এই সংসারটা কখন বুমেরাং করে অন্যত্রে তরী ভিড়ানো যায়। যার বাংলা সংজ্ঞায়ন করা হয় 'পরকিয়া' শব্দে। জলপিপি- একটি গোয়েন্দানির্ভর উপন্যাস হলেও লেখক সমাজে বাস্তবতাকে কেন্দ্র করেই যে উপাখ্যান তৈরী করেছেন- তা প্রসংশার দাবীদার। 'মানবিক সম্পর্কগুলো ইদানীং কেমন খসে পড়েছে। কারও প্রতি কারও যেন অন্তরের টান নেই।' (জলপিপি, পৃ: ৯১) মানবিকতার হারিয়ে যাওয়ার করুণ সুর এর মাধ্যমে লেখক দারুণভাবে আলোকপাত করেছেন। আজকালের লেখকরা জনপ্রিয় হয়ে ওঠার তাগাদায় উঠে পড়ে লেগেছেন। পাঠক কি খায় এ ভেবে সস্তা যৌন সুড়সুঁড়ির রসাত্নক বর্ণনা পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা লিখে যেতে আদৌ কুণ্ঠাবোধ করেন না। অথচ সামাজিক অনাচার সৃষ্টিতে এসব লেখাও অনুঘটক হিসেবে কাজ করে। লেখকের রুচিবোধ সম্পর্কে কিংবা একটি ভালো বইয়ের বৈশিষ্ট্যর পরিচয় মেলে। বড়োই আনন্দের বিষয়ই বটে- এই সময় এসে দুটো মানব মনের পারস্পরিক ভালোবাসা কিংবা আকর্ষণের বর্ণনা এতোটা নির্মোহভাবে উপস্থাপনা 'জলপিপি'র অন্য একটি আকর্ষণও বটে। ডিটেকটিভ অলোকেশ রয়ের সাথে আর্কিটেক্ট উর্বীর পারস্পরিক সম্পর্ক, মনোভাব, চাওয়া পাওয়া - কতটা পরিচ্ছন্নতার পরিচয় বহন করে- তা সত্যিই লেখকদের জন্য অনুসরণীয়। আজকের সময়ে তরুণ তরুণীর 'জাস্ট টাইম পাস' কিংবা আরও নির্লজ্জতার বাহিরে এসে সুস্থ মন মানসিকতার পরিচয় বহন করে অলোক ও উর্বী (অথবা অলোকের জলপিপি)। ভাঙ্গা গড়া সম্পর্কের এই সময়ে সুন্দর মানসিকতার সম্পর্কগুলো বরং টিকে থাকে আমৃত্যু। জলপিপিতে যেমন দুটি মানব মানবীর সম্পর্কের গল্প পাওয়া যায়, তেমনি মানবিক প্রেমেরও একটি অসামান্য আখ্যান পাওয়া যায় ইন্সপেক্টর নাজির সাহেবের মাঝে। গগন চৌধুরীর সন্তান কাজল- স্পেশাল চাইল্ড। যাদেরকে সমাজের বোঝা মনে করা হয়। গগনও বাদ যান নি সেই তালিকা থেকে। নিজ সন্তানকেই কি না অস্বীকার করতেন। ঘটনার এক পর্যায়ে এসে কাজল যখন একাকী হয়ে যাবে- কাজলকে নিজের পুত্র হিসেবে গড়ে তুলতে এককথায় রাজি হয়ে যান ইন্সপেক্টর নাজির। একজন পুলিশ কর্মকর্তা, তারউপর একটা স্পেশাল চাইল্ডকে ভালোবেসে বুকে টেনে নিয়ে তার ভার বহন করাটা চাট্টিখানি কথা নয়! (জলপিপি, পৃ: ৫৭) জলপিপির এই এক মানবিক অনুভূতি জাগ্রত করায় অনন্য কিছু স্থাপন করেছে। মানবমনকে ভাবাতে শিখিয়েছে। ডিটেকটিভ চরিত্র সৃষ্টি এক প্রকার চ্যালেন্জিং বিষয়ই বলা চলে। কেন চ্যালেন্জিং? কারণ একেকজন ডিটেকটিভ চরিত্র কালের মাঝে ছড়িয়ে পড়েন। সবার কাছে সমাদৃত হন। পাঠক তার কল্পনায় ডিটেকটিভকে আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ফেলেন। ডিটেকটিভের গোয়েন্দাগিরি, তার লাইফ স্টাইল- এসব অনুকরণে বিশেষ করে তরুণ পাঠকের আগ্রহের শেষ থাকে না! তবে একজন গোয়েন্দার মূল আকর্ষণের জায়গা হলো তার ঘটনাকে নিরুপণ করা, তদন্ত কাজে সহায়তা করা, এবং সবশেষে মূলহোতাকে শনাক্ত করতে সহায়তা করা৷ বুদ্ধি দিয়েই এসব হিসেব নিকেশ করে নেন একজন ডিটেকটিভ। জলপিপির ডিটেকটিভ অলোকেশের বুদ্ধিমত্তা, পরিস্থিতিকে সামাল দেয়া, তথ্য সংগ্রহের কৌশল অবলম্বন, সবকিছুকে বিশ্লেষণ করে সমাধান প্রকল্পে অর্থাৎ মূল ক্রিমিনালকে শনাক্ত করতে পারার দক্ষতা এসবের অনন্য পরিচয় মেলে। ডিটেকটিভ বিভিন্নধরনের হতে পারে। সরকারি, বেসরকারি ডিটেকটিভ। অলোকেশ রয় একজন প্রাইভেট ডিটেকটিভ। কিন্তু তার কর্তব্য পরায়নতা অসামান্য । সফল ডিটেকটিভ তো তাকেই বলা যায়, যে সংঘটিত ঘটনার সারমর্ম এবং খুনীকে এমনভাবে তুলে ধরেন যেন তিনি নিজেই সেখানে হাজির ছিলেন। ডিটেকটিভ অলোকেশের ক্ষেত্রেও আমরা তেমনটি দেখতে পাই। কারণ আমরা দেখতে পাই- 'উর্বী অলোকের কান্ড দেখে বিস্মিত হয়। ভেবে পায় না, এতসব কান্ড-কীর্তি সে জানল কি করে! নাকি ঘটনার সময় অকুস্থলে সে উপস্থিত ছিল!' (জলপিপি, পৃ: ১৫৪) একটি পুরো ঘটনার সমাধান প্রকল্পে অবশ্য একজন ডিটেকটিভই সব ভূমিকা পালন করতে সমর্থ হন না, তার জন্য প্রয়োজন সহায়ক কিছু মানুষ, যারা ডিটেকটিভকে সর্বতভাবেই সাপোর্ট দিয়ে যাবে। 'জলপিপিতে'ও এর ব্যতিক্রম ঘটেনি। অলোকের বন্ধু শুভ, ইন্সপেক্টর নাজির, আর্কিটেক্ট উর্বী- মূল সহায়ক শক্তি হিসেবে কাজ করেছিলো। তাদের একান্ত আন্তরিকতা, দায়িত্বশীলতা পুরো ঘটনার সমাধানে পৌঁছাতে যথেষ্ট ছিল৷ যা একদিক থেকে গোয়েন্দাগিরির কাজকে পূর্ণতা দিয়েছে, তেমনি বিভিন্ন সময় হাস্যরসের মাধ্যমে পাঠকমনের একঘেয়ামিও দূর করে দিচ্ছে। চমৎকার মিশেল! ডিটেকটিভ উপন্যাসে পাঠকের কৌতূহল শেষ পর্যন্ত ধরে রাখা এ ঘরানার লেখকদের সবচে বড় গুণ বটে, তবে ধরে রাখাটাও অনেকক্ষেত্রেই ধৈর্যেরও চ্যূতি ঘটায়। সেদিক থেকে অরুণ কুমার বিশ্বাস যথেষ্ট বুদ্ধিমত্তার সাথেই কাজটি করে গেছেন৷ সহজ সরলভাবে ঘটনার বর্ণনা করলেও পাঠক শেষ পর্যন্ত না গেলে সাসপেক্টকে খুঁজে বের করতে বেশ ঘাম ঝরাতে হবে। একবার এককে তো আরেকবার অন্যকে। আবার যাদেরকে সন্দেহের তালিকায় রাখতে যাবে, তাতেও পাঠক মনে সন্দেহ জাগবে। কারণ সাসপেন্স এবং সাসপেক্ট দুটোই যে স্পর্শকাতর। ঠিক তেমনি ভিকটিম গগন চৌধুরীর মৃত্যুকে ঘিরে যে রহস্য তৈরী হয়েছে, তা সহজেই সমাধান অনুমেয় নয়। কারণ সন্দেহের তালিকা দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতরই হচ্ছিল। শুধু তালিকাই দীর্ঘ নয়, বরং যুক্তি হচ্ছে আরও কত রহস্য! তবে শেষ পর্যায়ে এসে হয়ত পাঠক অনুভব করবে- The sweetest smiles hold the darkest secrets". (Sara Sephard | Flawless | good reads) ভাষা শৈলী সাহিত্যের অন্যতম অলঙ্কার। যেমন শব্দচয়ন, বাক্য বিন্যাস থাকা, অন্যদিকে সাবলীল বর্ণনা, দুর্বোধ্য শব্দ পরিহার লেখার মানকে অনন্য উচ্চতায় নিয়ে যায়। 'জলপিপি' দারুণ কথ্য স্টাইলে রচিত। পাঠে গতিশীলতা দান করে। বরং পাঠে যেন বহতা নদীর মতো ধারা পাওয়া যায়। অনেক গোয়েন্দাকাহিনি-ই রচিত হয় অবাস্তব প্রেক্ষাপটকে কেন্দ্র করে। যেগুলোর সাথে সমাজ ও সমাজের মানুষের তেমন একটা যোগাযোগ থাকে না। ফলে এসবে হয়ত শুধুই গোয়েন্দাগিরির স্বাদটুকু দিতে পারে, কিন্তু মানবিকবোধ জাগাতে, সমাজের নিষ্ঠুর বাস্তবতা তুল ধরতে ও সাবলীলভাবে রোমাঞ্চের বর্ণনা করতে অনেকটাই ব্যর্থ। অথচ সেখানে 'জলপিপি' বেশ স্বার্থক ই বলা চলে। এসবের উপস্থিতি একই সাথে সাহিত্য স্বাদ যেমন দান করে, মনুষ্যত্ব জাগাতেও তেমনি অগ্রণী ভূমিকা পালন করে। আর্থার কোনান ডয়েলের অনন্য সৃষ্টি শার্লক হোমস- এতোটাই জনপ্রিয়তা ছিল যে, লেখক যখন শার্লজ হোমসকেই মেরে ফেললেন- পাঠকরা এর বিরুদ্ধে আন্দোলন শুরু করে। পাঠক হৃদয়ে একটা চরিত্র কতটা দাগ কাটতে পারলে এমন বিস্ময়কর কিছু ঘটতে পারে! বাংলাসাহিত্যে নতুন ডিটেকটিভ হিসেবে প্রবেশ করলো অরুণ কুমার বিশ্বাসের 'আলোকেশ রয়'। ডিটেকটিভ অলোকেশ রায়কে স্বাগতম এই জগতে, সেও তার আইডলদের মতো অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে যাক। ---- বই : জলপিপি লেখক : অরুণ কুমার বিশ্বাস প্রকাশনা : অন্যপ্রকাশ প্রকাশকাল : ২০১৮ মূ্দ্রিত মূল্য : ৩০০ টাকা
Thriller
1
মুক্তিযুদ্ধ আমাদের অস্তিত্বের স্মারক, বাঙালি-জীবনের এক হিরন্ময় অধ্যায়। উল্লেখিত গ্রন্থপাঠে মনে হয়, ‘না’, মুক্তিযুদ্ধ শুধু এই ছাপান্নহাজার বর্গমাইলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ ছিল না। বরং একাত্তর সালে পৃথিবীর যে প্রান্তেই কোনো একজন বাঙালী ছিল, সেখানেও যে যুদ্ধ হয়েছিল তার এক প্রামান্য দলিল এ বইটি। হ্যাঁ, সেসব স্থানে হয়তো রক্তপাত হয়নি, গেরিলা আক্রমন হয়নি কিংবা শত্রুর মুখামুখিও হয়নি কেউ অস্ত্রসহ। তথাপি পৃথিবীজুড়ে বিশেষত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থানরত একজন রাজনীতি সচেতন বাঙালী তরুণের চিন্তার জগতজুড়ে স্বাধীনতা ও সর্বভৌমত্বের জন্য যে যুদ্ধ হয়েছিল তার ব্যক্তিক বর্ণনা ধারন করেছে আলোচ্য গ্রন্থটি। কিন্তু লেখকের স্মৃতি তর্পন অবলীলায় মিশে গেছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের স্বর্ণালী ইতিহাসের সাথে। লেখক তাঁর স্মৃতির ডালা সাজিয়েছেন বাঙালীর মুক্তি সংগ্রামে আমেরিকার বুকে জেগে উঠা ঘটনাপ্রবাহের মালা দিয়ে। এর মধ্যে উজ্জ্বল্যে ছড়ায় ‘বিচারপতি চৌধুরী, মাহমুদ আলী, এফ আর খান ও অন্যান্য বাঙালী’, ‘বাংলাদেশ লিগ অব আমেরিকা ’, কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’, অ্যালেন গিনসবার্গের সঙ্গে কয়েকটি সন্ধ্যা’ ইত্যাদি নিবন্ধগুলো। এছাড়াও ‘দেশ-বিদেশের বন্ধু এবং আমাদের সংগ্রাম’ এবং ‘কনসার্ট ফর বাংলাদেশ’ প্রভৃতি নিবন্ধগুলো মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসে অনেক তথ্য সংযোজন করে। আমাদের জানার জগৎকে আরো প্রসারিত করে। সব মিলিয়ে, হায়দার আলী খান এর ‘মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলো প্রবাসের আলোর গান’ গ্রন্থটি আমাদের মুক্তিসংগ্রামের ইতিহাসের পূর্ণপাঠই বলা যায়। মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস অনুশীলনে এ গ্রন্থটি নতুন প্রজন্মের কাছে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। ব্যক্তিগত স্মৃতির আড়ালে লেখক পাতায় পাতায় বিন্যস্ত করেছেন একটি জাতির উদ্ভবকে কেন্দ্র করে পৃথিবীর আরেক প্রান্তে ঘটে যাওয়া ঘটনাগুলো। বইটি পড়তে পড়তে মনে পড়ে যায় অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত এর ‘অ্যামেরিকান রেসপনস টু বাংলাদেশ লিবারেশন ওয়ার’ গ্রন্থটির কথা। আলোচ্য বইয়ের অনেক ঘটনাবলীর বিবরণ আমরা মুহিতের বইতেও পাই।
War
5
#রকমকারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতযোগিতা বইয়ের নাম: কোথাও কেউ নেই লেখক:হুমায়ুন আহমেদ ধরন:উপন্যাস প্রকাশনী: কাকলী প্রকাশনী নিয়মত মূল্য(রকমারি):৩০০৳ কাহিনী: শওকত সাহেবের মেজাজ কোনো সময়ই খুব একটা ভালো থাকে না। তার উপর বড় মেয়ে বকুল ইংরেজিতে ২৩ পেয়েছে। হেডমিস্ট্রেস লিখে দিয়েছে বাসায় একজন ইংরেজির শিক্ষক রাখতে। তবে বকুল জানে ম্যাট্রিক পরীক্ষায় ফেল করলে করবে পাটিগণিত এর জন্য। শওকত সাহেবের ছোট ছেলেকে প্রায়ই দেখা যায় ঘর অন্ধকার ঘরে শুয়ে আছে। মাথা ব্যাথাই তার একমাত্র কারন। তবে বাবুর(ছোট ছেলে) মাথা ব্যাথা কেন জানি মুনা আপা কে দেখলেই ভালো হয়ে যায়। যদিও মুনা আপা বলে দিয়েছে তাকে শুধু আপা ডাকতে। মুনা আপাকে সবাই বলে শক্তপ্রকৃতির মেয়ে। ছোটবেলায় মা-বাবা মারা যাওয়ার পরই মুনা আবিষ্কার করে তাকে কেউ খুব একটা পছন্দ করছে না। সংসার নিয়ে যখন সবাই ব্যস্ত তখন ঝামেলা মাথায় নেওয়ার কোনো মানেই হয় না। এসময় তার মামা শওকত সাহেব তাকে নিয়ে যায়। মা-বাবার ভালোবাসা বঞ্চিত মুনা বুঝতে পারে মামাই তার সব। শওকত সাহেবও যেনো মুনাকে একটু বেশিই ভালোবাসে। হয়ত তার ছেলেমেয়ের থেকেও বেশি। মধ্যবিত্ত্ব এই পরিবারটি নিজেদের হঠাৎ বিশাল বিপদের মধ্যে আবিষ্কার করে। পাল্টে যেতে থাকে চরিত্রগুলোর স্বভাব। বকুলের স্কুলে যেতে ইচ্ছে করে না, বাবুকেও দেখা যায় রাস্তায় রাস্তায় ঘুরে বেড়াতে। শওকত সাহেব কে আর দেখা যায় না বকুলের ট্রান্সলেশনের অপেক্ষায় বসে থাকতে। এমন সময় পাশে এসে দাঁড়ায় এলাকার গুন্ডা বাকের ভাই। বাকের ভাইয়ের একসময় সাঙ্গপাঙ্গ থাকলেও আজকাল তাকে একাই দেখা যায়। মোটর পার্টস এর দোকান দেওয়ার কথা থাকলেও দেওয়া হয়ে উঠে না।মুনার প্রতি বাকের ভাইয়ের দূর্বলতা আছে। অথচ মুনার বিয়ে ঠিক হয়ে গেছে মামুনের সঙ্গে। তাদের প্রেমের পরিণতিই হতে যাচ্ছে তা। কিন্তু হঠাৎ করেই মুনার মনে হয় মামুন স্বার্থপর। শেষ পর্যন্ত কী হয় তাদের বিয়ে? সবার বিপদে আপদে যে বাকের ভাই পাশে দাঁড়ায় সেই বাকের ভাই একদিন নিজেকে জেলের ভিতরে একা আবিষ্কার করে। যদিও ভাবে কেউ আসবে কিন্তু কেউ আসে না। মুনাকে খবর পাঠানো হয়। বিপদের সময় তাদের পাশে শুধু বাকের ভাই ছিল।মুনা কী যাবে বাকের ভাইকে দেখতে? জেল থেকে ছাড়া পায় বাকের ভাই। একদিন মুনার কাছে গেলে মুনা তাকে অস্বাভাবিক এক প্রস্তাব দিয়ে বসে। কিন্তু তাহলে মামুনের কী হবে? মামুনও যে মুনাকে ভালোবাসে! বাকের ভাইকে খুনের মামলায় আবার ফাঁসানো হয়। ঝুলতে থাকে একটা মামলা...ঝুলতে থাকে একটা স্বপ্ন। আশেপাশে মানুষের ভীরে মিশে থাকলেও মনে হতে থাকে আমরা যেন খুব একা। মনে হতে থাকে আসলে কোথাও কেউ নেই। পাঠ প্রতিক্রিয়া: কোথাও কেউ নেই নিসন্দেহে হুমায়ুন আহমেদের অন্যতম সেরা বই। সমাজে একেক জনের অবস্থান চিন্তা চেতনা লেখক খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরেছে। এই গল্প মধ্যবিত্ত্ব এক পরিবারের এক গল্প -বেকার এক যুবকের ভালোবাসার গল্প। বইয়ের ভিতরে একবার ডুব দিলে আর উঠতে ইচ্ছে করবে না। মনে হবে থাক না- ভালোই তো আছি বকুল,বাবু,মুনা কিংবা বাকের ভাই এর সাথে। খুব কম বই পড়ে আমি কেঁদেছি। কোথাও কেউ নেই পড়ে কাঁদতেই হলো। মানুষ হাসে সহজে, কিন্তু কাঁদে না। এই কান্নার মাঝেই হয়তো লুকিয়ে আছে বইটির স্বার্থকতা। বইটি পড়লে একটা কথা মনে হবেই-আমি ছাড়া আমার কে আছে? রকমারি লিংকঃ https://www.rokomari.com/book/1241/কোথাও-কেউ-নেই?ref=null
Fiction
0
কাহিনী সংক্ষেপঃ শুভপুর গ্রামে অদ্ভূতভাবে খুন হলো একজন। গ্রামের চেয়ারম্যানের মেয়ে অসুস্থ হয়ে পড়লো অস্বাভাবিকভাবে। তার চিকিৎসার জন্য ঢাকা থেকে আসলো এক তরুণ ডাক্তার। প্রচলিত পদ্ধতির বাইরে শুরু হলো চিকিৎসা। এর মাঝে গ্রাম থেকে কিছুদিনের জন্য নিরুদ্দেশ হয়ে গেলেন এক লোক। তার অন্তর্ধানের মাঝেই খুন হলো আরও একজন। খুন হয়ে যাওয়া মানুষদের শরীরে মিললো বিশেষ এক চিহ্ন, আর তা তদন্ত করতেই শুভপুর এলো ডিবির অফিসার। নিরুদ্দেশ হয়ে যাওয়া ব্যক্তিটি গ্রামে ফিরে এলেন নতুন এক কাজের দায়িত্ব নিয়ে, যা শেষ করতে পারলেই তিনি লাভ করবেন অসীম ক্ষমতা। সময়ের সাথে উন্মোচিত হতে লাগলো, চেয়ারম্যানের মেয়ের অসুস্থ হওয়া এবং খুনগুলোর সাথে রয়েছে হারিয়ে যাওয়া এক মেয়ের সম্পর্ক। আর এই সম্পর্কের সূচনা আরও গভীরে, এক অন্ধকারময় জগতে। তমিস্রা'র ভয়াল ভূবনে আপনাদের নিমত্রণ। বাজার থেকে ফেরার পথে রবি খুন হয়, অস্বাভাবিক ছিলো খুনটা, চোখে ছাতা গাঁথা ছিলো। যে খুন করেছে তার শারীরিক শক্তি প্রচুর বোঝাই যায়। পুলিশ আসে তদন্ত করতে, লাশ পাঠিয়ে দেয়া হয় হাসপাতালে, ডোম বুক চিরে রেডি করে রাখে। ডাঃ মারুফ ময়নাতদন্ত করে কিন্তু সবশেষে খেয়াল করে লাশের গায়ে একটা বিশেষ চিহ্ন, মনে হয় লোহা গরম করে ছ্যাঁকা দিয়ে তৈরি করা হয়েছে। ছবি তুলে রাখে সে কিন্তু রিপোর্টে সে কথা কেন জানি উল্লেখ করে না। আসগর মাহতাব তার চেলাদের নিয়ে বসে আছে, কিছুটা চিন্তিত কেন কে জানে... চেয়ারম্যানের মেয়ে সন্ধ্যার সময় পুকুর পাড়ে পানিতে পা ডুবিয়ে বসে আছে। হঠাৎ কে যেন পা ধরে টান দিলো... তারপর থেকেই অস্বাভাবিক আচরণ শুরু করে দিলো, কিছুতেই সারে না। কেশব রায়ের অনুরোধে ডাঃ ইমরান আসে চিকিৎসা করতে। কিন্তু সে একটু বেশিই চুপচাপ। আশেপাশে পোড়া গন্ধ পায়, কিসের গন্ধ...? সোহেল হঠাৎ করেই মারুফের সাথে দেখা করতে আসে। রাতে মারুফের বাসায় থেকে যায়। মারুফ সবকিছু সোহেলকে জানায় কারণ সে জানে সোহেলের সিম্বলিজমের প্রতি আগ্রহের কথা। তদন্ত করতে শুভপুর চলে যায় সোহেল। কাজ শুরু করে দেয় কিন্তু কোনও ক্লু পায় না। কিভাবে এগোবে বুঝতে পারে না সে। অবশেষে সুযোগ মিলে যায়, কাজ শুরু করে দেয় সে। প্রচুর তথ্য পেতে থাকে একে একে... নাহ... আর কিছু বলবো না, তাহলে স্পয়লার হয়ে যাবে। কাহিনী মোটামুটি, সেই একই সিম্বলিজম, কালো জাদু, শয়তানের সাথে যোগাযোগ এইসব। তবে লেখা ভালো। লেখকের আগে কোনও বই আছে কিনা জানি না। বইয়ের বেশ কিছু জায়গায় ব্যাপারে খটকা লেগেছে। যেমন; ৬৯ পৃষ্ঠায় - পূজা/পুজা - কোনটা হবে? ১২০ পৃষ্ঠায় বলা হয়েছে - কাঁচের পানি ভর্তি জগ (নাকি হবে পানি ভর্তি কাঁচের জগ অথবা কাঁচের জগ ভর্তি পানি) ১২৩ পৃষ্ঠায় - পলাশ কিভাবে বাংলোর দিকে যায়! যাওয়ার কথা তো সোহেলের। পলাশ তো শুভপুর গ্রামের বাসিন্দা। ১২৮ পৃষ্ঠায় - মেঘ গুরগুর করে নাকি গুড়গুড় করে?
Thriller
1
বইঃ হলুদ হিমু কালো র্যাব লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃ অন্য প্রকাশ ধরনঃ সমকালীন উপন্যাস পৃষ্ঠাঃ ৯৫ মূল্যঃ ১৫৬টাকা . বাংলাদেশের জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের অসাধারণ সৃষ্ট চরিত্রগুলোর মধ্য হিমু অন্যতম।হুমায়ূন আহমেদকে চেনে অথচ হিমুকে চেনেনা এমন মানুষ পাওয়া দুষ্কর।হিমুর প্রথম উপন্যাস ময়ূরাক্ষী।হিমু পড়ে হিমু হতে চেয়েছে এমন সংখ্যা অসংখ্য।হিমু অত্যন্ত জনপ্রিয় একটি চরিত্র। . রিভিউঃ হিমু একটি রুমে হাতল বিহীন কাঠের চেয়ারে বসে আছে।মোটেও নড়াচড়া করতে পারছেনা।কারণ তার হাত পেছনের দিকে বাঁধা।ব্রজ আঁটুনি।তার সামনে একটা টেবিল।টেবিলের ওপাশে তিনজন বসে আছে।হিমু এদের ধরণের ভিত্ততে নামও দিয়েছে।ঘামবাবু,হামবাবু ও মধ্যমণি।তিনজনের মধ্য মাঝখানে যিনি বসে আছেন তিনিই হলেন মধ্যমণি।তাঁর হাতে চেঙ্গিস খানের একটা বই।তিনি বইটার ভেতর সাংকেতিক কিছু আছে কিনা ধরার চেষ্টা করছেন।তাই অতি মনোযোগ পড়ছেন।হিমু যে তিনজনের সামনে বসে আছে এরা কিন্তু সাধারণ কেউ না,তারা হলেন র্যাব।এতদিন হিমু পুলিশের কবলে পড়তো,এবার পড়েছে র্যাবের কবলে।সে কিভাবে র্যাবের হাতে পড়লো সেও এক কাহিনী।এদের হাত থেকে হিমু কিভাবে বাঁচবে কে জানে!! অনেক কাণ্ড কারখানার পর কোনরকম ছাড়া পেয়ে সে শুনতে পায় মামলা আরো গুরুত্বর।তার বড় খালু ফ্লাওয়ার নামে এক সুন্দরী মেয়ের প্রেমে পড়েছে।মাজেদা খালার মতে তার খালুর বুড়ো বয়সে ছুকছুকানি করার রোগ হয়েছে।ঝাড়ুপেটা ট্রিটমেন্ট দিলে সব ঠিক হয়ে যাবে।বড় খালুকে হাতেনাতে ধরার জন্য মাজেদা খালা হিমুকে খালুর উপর নজরদারী করার দায়িত্ব দিয়েছেন।একটা মোবাইল দিয়েছেন যাতে দুজনের ছবি তুলে রাখে এবং কিছুক্ষণ পরপর কি হয়েছে জানায়।খালুর উপর নজরদারী করতে গিয়ে হিমু পুরোপুরি গোয়েন্দা বনে গেল।তাকে পুরোদস্তুর ছদ্মবেশ নিতে হয়েছে। এদিকে আবার মাজেদা খালা ঠিক করলেন এবার হিমুর বিয়ে দিয়েই ছাড়বেন।এভাবে আর রাস্তায় ঘুরাঘুরি চলবে না।বিয়ে হলে সব ঠিক হয়ে যাবে।তিনি মেয়েও ঠিক করে ফেলেছেন।মেয়ে চাইনিজ কিন্তু ভারী লাজুক ও মিষ্টি।কার্ড ছাপানোও হয়ে গেছে।বিলি করা হচ্ছে। তবে কি অবশেষে হিমুর সন্ন্যাস জীবনের পরিসমাপ্তি হতে চলল?হিমুর বিয়ে কি সত্যিই হয়ে যাবে?? পাঠপ্রতিক্রিয়াঃহিমুর বই পড়ে আমরা সাধারণত সবসময় হিমু বিভিন্ন উক্তি এবং হিমুর বাবারহিমু বলে যাওয়া বাণী সম্পর্কে জানতে পারি।কিন্তু এখানে মাজেদা খালার একটা বাণী আছে যেটা সবার সাথে শেয়ার না করে পারছিনা।সেটা হলো:- "পুরুষ মানুষকে চোখে চোখে রাখতে হয়।চোখের আড়াল হলেই এরা অন্য জিনিস।এরা হলো দড়ি দিয়ে খুঁটির সঙ্গে বেঁধে রাখার বস্তু।দড়ি যতদূর ছাড়া হবে ততদূর পর্যন্ত এর চড়ে বেড়াবে।এর বাইরে যাবেনা।আমার কাছে এটা অসাধারণ লেগেছে।সেই সাথে যারা হিমুকে ভালোবাসেন,কিন্তু বইটা এখনও পড়েননি,তারা তাড়াতাড়ি পড়ে ফেলুন। রেটিং: ৪.৫/৫
Fiction
0
কারাগারের রোজনামচা মাটি ও মানুষের প্রতি ভালোবাসার দলিল। অসাধারণ বই।
Political
3
ইমরান খান। পাকিস্তানের ঐতিহ্যঘেরা শহর পাঞ্জাবে ১৯৫২ সালে জন্মগ্রহণ করেন। সম্ভ্রান্ত পরিবারের সন্তান ইমরানের শৈশব কেটেছে লাহোরের ক্রিকেট মাঠে। কৈশোরে ক্রিকেট দিয়ে বিশ^ জয়ের স্বপ্ন দেখতেন। স্বপ্নের প্রথম ধাপ হিসেবে পাকিস্তানের হয়ে প্রথম আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেন ১৯৭১ সালে। এক বছর পরেই ১৯৭২ সালে উ”চশিক্ষার জন্য পাড়ি জমান বিশ^খ্যাত অক্সফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে। সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে পাকিস্তানকে ১৯৯২ সালের বিশ^কাপ জিতিয়েছেন। ক্রিকেট থেকে অবসর গ্রহণের পর নজর দেন সামাজিক সেবামূলক কর্মকা-ের দিকে। নানান চড়াই-উতরাই পেরিয়ে ১৯৯৪ সালে প্রতিষ্ঠা করেন পাকিস্তানের প্রথম দাতব্য ক্যান্সার হাসপাতাল; যেখান থেকে গরিব ও অস”ছল রোগীদের প্রায় বিনামূল্যে ক্যান্সারের চিকিৎসা প্রদান করা হয়। তিনি ১৯৯৬ সালে প্রতিষ্ঠা করেন নতুন রাজনৈতিক দল তেহরিক-ই ইনসাফ। তখন থেকেই ধারাবাহিকভাবে পাকিস্তানের রাজনৈতিক সংস্কৃতির পরিবর্তন, কার্যকর সরকার প্রতিষ্ঠা এবং সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যা”েছন সাবেক সফল এই অলরাউন্ডার। রাজনীতিতে প্রবেশের ২২ বছরের মাথায় তাঁর দল সরকার গঠন করে এবং তিনি প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ গ্রহণ করেন। পাকিস্তানসহ সারা দুনিয়ার রাজনীতি সচেতন মানুষের কাছে ইমরান খান এক আলোচিত নাম।
Political
3
#রিভিউ বইঃ দি দ্য ভিঞ্চি কোড লেখকঃ ড্যান ব্রাউন অনুবাদঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশকঃ বাতিঘর প্রকাশনী ধরণঃ থ্রিলার বা রোমাঞ্চোপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৪৪৭ মূল্যঃ ২৩৮ টাকা (রকমারি) সার-সংক্ষেপঃ দু’হাজার বছরের পুরনো সত্যকে চিরতরে নির্মূল করার জন্যে একই দিনে চারজন বিশিষ্ট ব্যক্তিকে হত্যা করা হয়। সত্যটি জনাজানি হয়ে গেলে হাজার বছরের ইতিহাস লিখতে হবে নতুন ক’রে। সত্যটি লালন ক’রে আসছে একটি গুপ্ত সংঘ-সেই গুপ্ত সংঘের সদস্য ছিলেন আইজ্যাক নিউটন, ভিক্টর হুগো, বত্তিচেল্লি আর লিওনার্দো দা ভিঞ্চির মতো ব্যক্তি। ওদিকে উগ্র ক্যাথলিক সংগঠন ওপাস দাই সেই সত্যকে চিরতরে নির্মূল করার আগেই গুপ্তসংঘের গ্র্যান্ডমাস্টার তার ঘনিষ্ঠ একজনের কাছে হস্তান্তর ক’রে দেয় আর ঘটনাচক্রে এরকম একটি মারাত্মক মিশনে জড়িয়ে পড়ে হারভার্ডের সিম্বোলজিস্টের এক প্রফেসর। পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ যিশুখ্রীস্ট। (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৪ অব্দ – আনুমানিক ৩০ খ্রিস্টাব্দ) ছিলেন একজন ইহুদি ধর্মপ্রচারক, যিনি খ্রিস্টধর্মের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত হন। কুমারি মাতা মেরির কোলে জন্ম নেয়া এই মহাপুরুষকে খ্রীস্টধর্মাবলম্বিরা ঈশ্বরের পুত্র হিসেবে দাবী করেন। ২৫শে ডিসেম্বর খ্রীস্টের জন্মদিন তাদের ধর্মীয় গুরুত্তপূর্ণ দিন। ধর্মানুসারে যীশু একজন সমাজ সংষ্কারকও ছিলেন বটে। তার অনেক ভক্ত ছিল। তিনি একেশ্বরবাদের ধর্ম প্রচার করতেন। পরবর্তিতে তৎকালীন সমাজের উগ্রমতবাদীরা তাকে ক্রুশবিদ্ধ করে হত্যা করে। লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি। ইতালীয় রেনেসাঁসের কালজয়ী চিত্রশিল্পী। অবশ্য বহুমুখী প্রতিভাধর লিওনার্দো দা ভিঞ্চির অন্যান্য পরিচয়ও সুবিদিত- ভাস্কর, স্থপতি, সঙ্গীতজ্ঞ, সমরযন্ত্রশিল্পী এবং বিংশ শতাব্দীর বহু বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারের নেপথ্য জনক। তাঁর বিখ্যাত শিল্পকর্মগুলোর মধ্যে মোনালিসা, দ্য লাস্ট সাপার অন্যতম। এরমধ্যে মোনালিসার পর এই লাস্ট সাপার ছবিটিকেই লিওনার্দোর সেরা কীর্তি হিসেবে মনে করা হয়। ধারণা করা হয় ১৪৯৫-১৪৯৮ খ্রিস্টাব্দের মধ্যবর্তী সময়ে ছবিটি আঁকা হয়েছিলো। ছবিটিতে মাঝখানে উপবিস্ট যিশুখ্রিস্টকে তাঁর চারপাশে শিষ্যদের নিয়ে শেষ নৈশভোজরত অবস্থায় দেখা যাচ্ছে। যে নৈশভোজের বর্ণনা রয়েছে গস্পেল অব জন’এর ১৩:২১ ছত্রে, যেখানে যিশু বর্ণনা করেন তাঁর বারোজন শিষ্যের মধ্য হতে একজন পরদিনই তাঁর সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করবে। এবার আসি গল্পের কথায়। গল্পের শুরু হয় প্যারিসের লুভর মিউজিয়ামের কিউরেটরের মৃত্যুর মধ্যদিয়ে। বিভৎসভাবে মৃত্যু হয় তার। কিন্তু তার ভেতরেও থেকে যায় রহস্য। অদ্ভুতভাবে একধরণের চিনহ রেখে মৃত্যুবরণ করেন তিনি। তাজ্জব বনে যায় পুলিশ। ঘটনাচক্রে মৃত্যুটির সাথে জড়িয়ে পড়েন হারভার্ড ইউনিভার্সিটির সিম্বলজির প্রসেফর রবার্ট ল্যাংডন। প্রচ্ছন্নভাবে খুনের দায় গিয়ে পড়ে তার উপর। সাহায্য করতে এগিয়ে আসে একজন মহিলা পুলিশ। তারপর শুরু হয় অভিযান। নিজেকে নির্দোষ প্রমাণ করার অভিযান। আস্তে আস্তে কিছু আশ্চর্য সত্যের সম্মুখিত হতে থাকে ল্যাংডন। বেরিয়ে আসে কিছু সত্য যা আগে কেউ জানতো না। চরম এক সড়যন্ত্রের জালে জড়িয়ে পড়ে সে। লেখক ড্যান ব্রাউনের ২য় বই এটি। তার প্রথম বইয়ের নাম এঞ্জেলস অ্যান্ড ডেমন্স। সেটিও এই ল্যাংডনকে নিয়ে লেখা। রবার্ট ল্যাংডনকে নিয়ে লেখক এখন পর্যন্ত ৪টি বই লিখেছেন। কিন্তু তার মধ্যে সবচেয়ে বেশী সফলতা পেয়েছে দ্য ভিঞ্চি কোড। ইতিহাস, পুরান, শিল্প, সব মিলিয়ে পুরো প্যাকাজের মত করে লিখেছেন লেখক। এমনকি তিনি গল্পে এমনকিছু ব্যাপার তুলে ধরেছিলেন, যে স্বয়ং পোপ ‘ফতোয়া’ জারি করেছন, সত্যিকারের ক্যাথলিক হলে এ বই যেনো কেউ না পড়ে। এখন বলি অনুবাদের দিকটা। দ্য ভিঞ্চি কোড বইটির এখন পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য ৩টি বাংলা অনুবাদ রয়েছে। তার ভেতর সর্বপ্রথমটি করেন বাতিঘর প্রকাশনীর কর্ণধার, লেখক, অনুবাদক “মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন। বইটি বের হয় ২০০৫ সালের আগস্ট মাসে। আমার জানামতে এটি তাঁর করা প্রথম অনুবাদগ্রন্থ। তাই প্রথম বই হিসেবে একেবারে খারাপ হয়নি বইটি। ভাষা বেশ সাবলিল ছিল। তবে উপস্থাপণ ও বানানে ভুল ছিল প্রচুর। পরবর্তিতে অন্যান্য সংস্করণে বানানের দূর্বলতাটা কিছুটা কাটানো হয়েছে। কিন্তু এতকিছুর ভেতরেও ভিঞ্চি কোডের অনুবাদ্গুলোর মধ্যে এটিই সবথেকে বেশি পাঠক প্রিয়তা পেয়ে আসছে! উল্লেখ্য যে, ভিঞ্চি কোডের আরো একজন অনুবাদক আছেন। তিনি হচ্ছেন শেখ আবদুল হাকিম। যারা সেবা প্রকাশনীর বই নিয়মিত পড়েছেন বা পড়েন তাদের কাছে এটি অনেক সুপরিচিত নাম। এই ভদ্রলোকের অনুবাদ বেশ ভালো। এমনকি নাজিম সাহেবের থেকেও। তবে তার বইয়ের প্রচারণা কম ও দাম বেশি হওয়ায়, অনেকেই পড়তে পারেন না। ২০০৬ সালে এই বইটি অবলম্বনে হলিউডে মুভি তৈরী হয়। রবার্ট ল্যাংডনের চরিত্রে অভিনয় করেছিলেন খ্যাতনামা অভিনেতা টম হ্যাংকস। ছবিটা সেই বছর অন্যতম ব্যবসাসফল ছবিতে পরিণত হয়। কিন্তু পাঠকগণ, দয়া করে সিনেমার কথা শুনে বইটি পড়া থেকে বিরত থাকবেন না। কারণ বইটি না পড়লে সিনেমার অর্ধেকই বুঝবেন না কিংবা কাহিনীর পরিপূর্ণ মজাটা পাবেন না!  বইয়ের বাহ্যিক দিকের কথা আর কি বলবো... প্রচ্ছদ, কাগজের মান, বাঁধাই, কভার সব কিছুই বেশ সুন্দর ও আকর্ষনীয়। দামও সাধ্যের ভেতর। সবশেষে এটাই বলবো, যারা এখনো পড়েন নি বইটি, পড়ে ফেলুন। ভালো লাগবে। আর হ্যাঁ! আপনারা সবাই হয়ত লক্ষ্য করেছেন, আমি রিভিউ এর প্রথমে যিশু আর লিওনার্দো ভিঞ্চির লাস্ট সাপার নিয়ে একটু জ্ঞান দিয়েছি। ওটা কেন দিলাম? বইটা পড়েন, বুঝতে পারবেন!  রেটিংঃ ৪/৫
Thriller
1
বিশ্বখ্যাত আমেরিকান কল্পবিজ্ঞান আর ইতিহাসভিত্তিক বইয়ের লেখক আইজাক রচিত ‘দ্য গ্রিক- এ গ্রেট অ্যাডভেঞ্চার’ বইটির বাংলা অনুবাদ ‘গ্রিকদের দুঃসাহসিক অভিযান’ একুশে বইমেলা ২০১৭-তে প্রকাশিত হয়েছে সন্দেশ প্রকাশনী থেকে। বইটি অনুবাদ করেছেন তরুণ লেখক ও অনুবাদক শেহজাদ আমান। এ বইয়ে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ থেকে শুরু করে বর্তমান সময় পর্যন্ত গ্রিক জাতির ইতিহাস আইজাক আসিমভের তীক্ষ্ণ লেখনিতে অত্যন্ত দারুণভাবে ফুটে উঠেছে। ট্রয় থেকে শুরু করে অটোমান সাম্রাজ্য, একিলিস থেকে শুরু করে আলেক্সান্ডার– গ্রিক সভ্যতা সংশ্লিষ্ট সব কাহিনীই এ বইয়ে পাওয়া যাবে। সভ্যতার অগ্রগতির পথে গ্রিক জাতির ইতিহাসকে লেখক রোমাঞ্চকরভাবে তুলে ধরেছেন। গ্রিক জাতির অগ্রযাত্রাকে দেখিয়েছেন রোমাঞ্চকর অভিযানরূপে, যা তাদের একটির পর একটি বাধা পেরিয়ে পৃথিবীর ইতিহাসে নিজেদের নাম স্বর্ণাক্ষরে লিখে রাখতে সক্ষম করেছে। ইতিহাসে আর কোনো জাতিই পৃথিবীতে গ্রিকদের মতো ঐতিহ্য রেখে যায়নি। এটা খুবই কম বিশ্বাসযোগ্য মনে হয় যে এড্রিয়ান সাগরের পাথুরে দ্বীপমালা আর উপদ্বীপে অবস্থানকারী এত বিচ্ছিন্ন এক জনগোষ্ঠী এত কিছু অর্জন করেছে; কিন্তু যুদ্ধবাজী বা রাজনীতি, শিল্প বা খেলাধুলা, সাহিত্য বা দর্শন- যেখানেই তাদের হাতের স্পর্শ লেগেছে, সেখানেই সোনা ফলেছে। তারা মানব চৈতন্যে এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে; তাদের আদর্শ, তাদের বীরেরা হয়ে গেছে আমাদের নিজেদের। এই বইটির কাহিনী শুরু হয়েছে চার হাজার বছরেরও বেশি সময় আগে, যখন বলকান উপদ্বীপের আধা-সভ্য গোত্রসমূহ প্রাচীন মিনোয়ান ক্রিটের উন্নত সংস্কৃতির সংস্পর্শে এসেছিল আর মহা-অভিযাত্রা শুরু করেছিল হারকিউলিসের থাম থেকে শুরু করে হিমালয় পর্যন্ত অভিযানে গ্রিক সেনাদলকে পাঠিয়ে এবং গ্রিক শাসকদের পারস্য, মিশর আর সিসিলির সিংহাসনে বসিয়ে, যে অভিযাত্রা পরিচালিত হয়েছিল এথেন্সকে সভ্যতার সেরা নিদর্শন আর স্পার্টাকে নিঃস্বার্থ বীরত্বের প্রতীক বানাতে। বিজয়ের চূড়ান্ত পরিণতি পৌঁছেছিল এথেন্সের স্বর্ণযুগে, কিন্তু তা গল্পের শেষ থেকে অনেক দূরে। কেননা গ্রিস রোমান সাম্রাজ্যে আর চূড়ান্তভাবে, কনস্ট্যান্টিনোপলে, শিক্ষক হিসেবে ভূমিকা চালিয়ে গিয়েছিল, প্রাচীন পৃথিবীর শেষ সংরক্ষণকর্তারূপে। যতক্ষণ পর্যন্ত না ১৪৫৩ সালে প্রজ্ঞা আর শিক্ষার মহান কেন্দ্রটি অবশেষে ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। বিশদভাবে পরিপূর্ণ আর ইতিহাসের অগ্রসরতার বোধে সাহসী এই বইটি নিশ্চিতভাবেই গ্রিস নামের গৌরবকে নিয়ে লেখকের নিজস্ব অত্যুৎসাহ আর অনুরক্ততাকে পাঠকের মধ্যে সংক্রামিত না করে পারে না। গ্রিক বীরদের দুঃসাহসিক অভিযান নিয়ে রচিত বইটি আশা করি সবাইকেই রোমাঞ্চিত করবে।
War
5
#বই_দেবদাস #লেখক_শরৎচন্দ্র_চট্টোপাধ্যায় #প্রধান_চরিত্র_পারু_দেবদাস_ও_চন্দ্রমুখী ধরন - চিরায়ত উপন্যাস প্রকাশনায় - দি ইউনিভার্সিটি প্রেস লিমিটেড(ইউ পি এল) মুদ্রিত মুল্য - ১১০ টাকা #উপমাঃ যাহারা কখনো মুক্তর মালা দেখে নাই তাহাদের যদি একখানা মুক্তর মালা লইবার জন্য বলা হয় তাহা প্রথমে বোধ করি লইতে তেমন আগ্রহ প্রকাশ করিবেনা কারন তাহারা যে ইহার কদর বোঝেনা। কিন্তু যখন বুঝিতে পারে তখন যদি দুই খানা মালা সামনে পাইয়া যায় বোধ করি দুইখানাই ধরিবার প্রয়াস করিয়া থাকে। কিন্তু সে হয়তো ভুলিয়া যায় দুই খানার লোভ তাহার শোভা পায় না। ইহাতে হিতে বিপরীত হইতে পারে। #বই_আলোচনাঃ প্রথমেই বলিয়া রাখি আমার আগে অনেকেই দেবদাস লইয়া অনেক কিছুই লিখিয়াছে, আমি তাহাদের ন্যায় পারিবোনা। তবু দেবদাস পড়িয়া লেখিবার ইচ্ছা দমন করিতে পারিলাম না। তাই সংক্ষেপে কিছু তুলিয়া ধরিবার সাহস করিলাম। বাল্যপ্রেম বলিয়া একটা কথা আছে, তাহার প্রভাব যে কতটা গভির হইতে পারে তাহা বই খানা পড়িলে বুঝিতে পারা যায়। ছোট বেলায় খেলার ছলে যাহাকে আপন করিয়া লইয়াছিলো পারু তাহাকেই জীবন সঙ্গী হিসাবে মানিয়া লইবে ইহা পারু হয়তো নিজেও তাহা জানিত না। কিন্তু হিন্দু সমাজে যে জাত বলিয়া একটা কথা প্রচলিত আছে। ভালোবাসিলেই যে হিন্দু সমাজের জাত তাহা মানিয়া লইবে তা তো নয়। প্রান দিয়া দিব তবু জাত রক্ষা করিবো ইহাই জাহাদের ভাষ্য তাহাদের নিকট ভালোবাসার আর কতটুকই বা মুল্য? দেবদাসের ছোট্ট একটা ভুল যে তাহার জীবনে ওলট পালট করিয়া দিবে ইহা তো কল্পনাতীত। একটিবার ভুল সংশোধন করিবার সুযোগ টাও যে পাইবে না ইহাওতো সে ধারনা করিতে পারে নাই। দেবদাস পারু কে লইয়া সবাই কম বেশি জানে কিন্তু যার সম্পর্কে সকলের একটু কম জানা-শোনা যে চরিত্র খানি আমাকে সারাক্ষন মোহিত করিয়া রাখিয়াছিলো সে হইলো চন্দ্রমুখি। সমাজ যাহাকে ঠাই দেই নাই, যাহার কোন আত্ম-সম্মান নাই, যাহার কলঙ্কের ডর নাই, যাহার ভালোবাসার অধিকার নাই, তাহারাও যে ভালোবাসিতে পারে এবং যাহাকে ভালোবাসিবে তাহার জন্য প্রয়োজনে স্বর্গীয় সুখ ত্যাগ করিতেও পিছপা হইবে না, চন্দ্রমুখী তাহার জলন্ত উদাহরন। কিন্তু তাহাতে হইবে কি ভালোবাসিলেই কি তাহা গ্রহন যোগ্য হইবে? যে সমাজ পার্বতীর ন্যায় প্রতিমার ভালবাসাকেই গ্রহন করিয়া লয় নাই সেইখানে চন্দ্রমুখীর ভালোবাসা কি স্থান পাইবে? পার্বতী ও চন্দ্রমুখী দুজনেই যখন দেবদাস কে ভালোসিয়া ফেলিলো, দেবদাস প্রথমে চন্দ্রমুখী কে ঘৃনা করিলেও পরবর্তীতে ভালোবাসিতেও আরম্ভ করিয়াছিলো। কাকেই বা প্রকৃত ভালোবাসিলো দেবদাস? পরিণতি বা কি হইলো? কোথায় পারু? কোথায় দেবদাস? আর কোথায়ই বা চন্দ্রমুখী? বই লইয়া আর বেশি লিখিবোনা শেষে পরিণতি চলিয়া আসিতে পারে। বাকিটা পড়িয়া জানিয়া লইবেন। #উপলব্ধিঃ রামায়ন পড়িবার কালে দেখিয়া ছিলাম, লক্ষণ সীতা কে রক্ষা করিবার জন্য গণ্ডী বা রেখা টানিয়া যায় আর এও বলিয়া যায় যে রাম বা লক্ষণ কেউ না আসা পর্যন্ত যে এই রেখা অতিক্রম না করে। কিন্তু সীতা তাহার কথা রক্ষা করিতে পারিলোনা তাই রাবন তাহাকে হরন করিবার সুযোগ পাইলো। এই কথা বলিবার উদ্দেশ্য হইলো মানুষ মনের অজান্তেই কিছু ভুল করিয়া থাকে যখন করে তখন সে উপলব্ধি করিতে পারেনা যে সে আসলে কি করিতেছে তাহার পরিণতি বা কি হইবে। যদি একবার ভাবিতো মনের অজান্তেই আজ যে ভুল করিতেছে হয়তো নিয়তি তাহাকে ভুল শুধরাইবার সুযোগ টা পর্যন্ত দিবেনা। কিছু কিছু অভিমানি মানুষ থাকে যাহারা আসলে প্রিয় মানুষটার প্রতি একটু বেশি অধিকার দাবী করিয়া বসে। সেই কারনেই হয়তো মানুষটির ছোট্ট ভুলটাকে ক্ষমা করিতে পারেনা। কেমন করিয়াই বা করিবে যাহাকে ভালোবাসে সে ভুল করিতে পারে তাহা যে বিশ্বাস করিতেই কষ্ট হয়, তাই ছোট ভুল গুলো বড় হইয়া সামনে আসিয়া দাড়ায়। আজ আর পারিবো না.........। শুধু একটি কথা পারু কে জিজ্ঞেস করিতে বড়ো ইচ্ছা হয়...... পারু কেন সেদিন তোমার দেবদা কে ক্ষমা করিতে পারো নাই? দেবদাস তুমিই বা কেন চন্দ্রমুখী কে ভালোবাসিয়াও গ্রহন করিতে সংকোচ বোধ করিয়াছিলে? চন্দ্র তুমিই বা কেন সেদিন সব জানিয়াও দেবদাস কে একলা ছাড়িয়া দিলে? #শরৎ_বাণী ১. ভালোবেসে শুধু হাতে ফিরে আসাটাই বড় যাতনা, তারপরে আবার নতুন করে ভালোবাসতে যাবার মত বিড়ম্বনা সংসারে আর নেই। ২. স্বামীর মঙ্গল চিন্তার কাছে স্ত্রীর সব তুচ্ছ হয়া উচিৎ। ৩. যাকে ভালোবসিনা সে যদি জোর করে ভালোবাসার কথা সোনায় এমন বিপদ আর নেই। ৪. ভালোবাসা এক, আর রূপের মোহ আরএক। ৪. চঞ্চল এবং অস্থিরচিত্ত বলে স্ত্রী লোকের যত অখ্যাতি ততখানি অখ্যাতির যোগ্য তারা নয়। ৫. মানুষের মঙ্কে বিশ্বাস নেই। ৬. স্ত্রী লোকের মন বড় চঞ্চল, বড় অবিশ্বাসী। ৭. সতর্ক এবং অভিজ্ঞ লোকের স্বভাব এই যে, তাহারা চক্ষুর নিমিষে কোন দ্রব্যের দোষগুণ সম্বন্ধে দৃঢ় মতামত প্রকাশ করে না। ৮. মানুষ দুঃসময়ের মাঝে যখন আশা-নিরাশার কুলকিনারা দেখিতে পায়না, দুর্বল মনে বড় ভয়ে ভয়ে আশার দিকটাই চাপিয়া ধরিয়া থাকে। বিঃ দ্রঃ দেবদাস লইয়া লেখিবার যোগ্য আমি নই। যতটুকু পেরেছি চেষ্টা করেছি। বই লইয়া তেমন লিখি নাই, মূল বক্তব্য ফাঁস হইয়া যাইবার ভয়ে। ভুল-ভ্রান্তি ক্ষমা করিবেন।
Fiction
0
হাজারো প্রশ্নের জবাব-১, বইটি পাঠকের মাঝে অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা পায়। আর তাই পাঠকের চাহিদার প্রতি লক্ষ্য রেখে প্রকাশিত হলো হাজারো প্রশ্নের জবাব-২। ধ্যানের মাধ্যমে নিজের প্রতিভা বিকাশ করা ,ক্যারিয়ারে সাফল্য, শিক্ষার পথকে সুগম করা্ ইত্যাদি, জীবনের বিভিন্ন স্তরে কীভাবে চূড়ান্ত লক্ষ্যে পৌঁছাতে হয় তা জানা যায়। এখানে বইটি থেকে সামান্য অংশ তুলে দিচ্ছি : প্রতিকূলতাকে ইতিবাচকভাবে নিন। বুদ্ধি শাণিত হবে। আপনি হয়ে উঠবেন শক্তিমান। ভাবুন মুন্সীগঞ্জের শাহীন মিয়ার কথা। যার মা বিয়ে বাড়িতে মসলা বেঁটে, থালাবাসন ধুয়ে সংসার চালান। বিয়ে বাড়ির উচ্ছিষ্ট খাবার জুটলে খুশি মনে নিয়ে আসেন বাড়িতে তিন সন্তানকে খাওয়াবার আশায়। থাকেন ভাড়া করা একটা ছোট টং ঘরে। ঘরে একটি চৌকি ও একটি টেবিল পাতা। মেঝেতে মা ভাই বোন আর চৌকিতে তিন ভাই বোন জড়াজড়ি করে ঘুমায়। টেবিলটাতে ওরা পালা করে লেখাপড়া করে। ঘরের ভাড়া দিতে হয় মাসে ৭০০ টাকা। এত প্রতিকূলতার মধ্যেও শাহীন লেখাপড়া চালিয়ে গেছে। ক্লাস এইটে ট্যালেন্টপুলে বৃত্তি পেয়েছে। জিপিএ-৫ পেয়েছে এসএস সি-তে এখন স্বপ্ন দেখছে উচ্চ শিক্ষা নিয়ে আরও এগিয়ে যাবার। সংগ্রাম করে প্রতিকূলতাকে জয় করার যে শিক্ষা বইটি থেকে পাওয়া যায়। তা যথাযথভাবে অনুসরণ করতে পারলে জীবনের নেতিবাচক বিষয়গুলো থেকে নিজেকে মুক্ত করা সম্ভব। মহাজাতকের এই বইটি কোনো গল্পের বই নয়; এ থেকে উপকার পেতে হলে অনুসরণ করে এগোতে হবে। বইটির বহুল প্রচার কামনা করছি।
Motivational
6
শরতের এক বিকেলে, আকাশ থেকে নেমে আসে একটা তুষার শুভ্র গোলক। অদ্ভুত সুন্দর সেই গোলকটি আচমকাই ফেটে পড় শহরের উপরে, চরম আক্রোশ নিয়ে। ওটা ছিল একটা মহাশক্তিশালী পারমানবিক বোমা। এরপর আর কিছু থেমে থাকেনি। মানুষরা যার যত মারমানবিক বোমা ছিল, সব নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে একে অন্যের উপরে। পরেরদিন সকাল হবার আগেই, লক্ষ বছরের মানবজাতি, হাজার হাজার বছরের মানব সভ্যতার সকল চিহ্ন ধুলায় মিশে গেল। বড় বড় যত নগর, বন্দর, বানিজ্যস্থল, সব গুড়িয়ে ধুলার মত উড়ে গেল। এখানে ওখানে, কিছু জায়গা বেচে গেল, চরম ক্ষতিকর তেজস্ক্রিয়তা থেকে মুক্ত এই এলাকাগুলোতে আশ্রয় বানিয়ে বেচে থাকে মানুষেরা। আকাশ, পানি, মাটি, খাবার.. সব বিষাক্ত তেজস্ক্রিয়তা দ্বারা। সবই নষ্ট হয়েছে, কিন্তু নষ্ট হয়ে যায়নি পৃথিবীজোড়া নেটওয়া‌র্ক, নষ্ট হয়ে যায়নি এই নেটওয়া‌র্কে ছড়িয়ে থাকা অসংখ্য নোড নিয়ে তৈরি হওয়া মহাশক্তিশালী কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তা, গ্রুস্টান! এই ছোট ছোট বস্তি বানিয়ে থাকা মানুষগুলোর কাছে গ্রুস্টান তাই ঈশ্বরের মতই। আর গ্রুস্টান নামক কৃত্তিম বুদ্ধিমত্তাও মানুষের উপরে নিজের ক্ষমতা যেন সেভাবেই জাহির করছে! বরাবর যেভাবে ঘটে, এক নি:সঙ্গ বক্তা তুলে ধরে সবার মনের কথা। কুশানকে জীবনের হুমকি দেয়া হয় গ্রুস্টান এর বিরোধিতা করার জন্য, গ্রুস্টান যে কোন ঈশ্বর নয়, কেবল পৃথিবীব্যপী বিস্তৃত এক নেটওয়া‌র্ক অপারেটিং সিস্টেম এটা সবাইকে আবারো মনে করিয়ে দেবার জন্য। বসতির নিরাপদ আশ্রয় থেকে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয় কুশান, আশ্রয় নিতে হয় তাকে মানুষ বসবাসের অযোগ্য, বিষাক্ত তেজস্ক্রিয় এলাকায়। কিন্তু এর মাঝে ঘটতে থাকে একটার পর একটা আ‌শ্চ‌র্য ঘটনা। যে মানুষটার বাচবারই কথা নয়, সে শুধু বেচেই যায় না, ঘটাতে থাকে একটার পর একটা অদ্ভুত ঘটনা। পড়ার জন্য আমন্ত্রন সবাইকে। মুহম্মদ জাফর ইকবাল এর সবচেয়ে ভাল সায়েন্স ফিকশনগুলোর একটা এই বইটি।
Science-Fiction
4
#রিভিউ বইয়ের নামঃ শ্বাপদ সনে বইয়ের ধরণঃ থ্রিলার/রোমাঞ্চপন্যাস লেখকঃ নাবিল মুহতাসিম প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী প্রচ্ছদশিল্পীঃ ডিলান প্রকাশকালঃ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ পৃষ্ঠাঃ ২০৮ মূল্যঃ ২০০ টাকা সার-সংক্ষেপঃ খুনের দায় এড়াতে প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর বন্ধুর সাথে এক অজপাড়াগাঁয়ে গা ঢাকা দিতে এসে আরো বড় বিপদে পড়ে গেল শিল্পপতির ছেলে জামশেদ। একের পর এক গ্রামবাসি খুন হচ্ছে অজানা কোনোকিছুর হাতে। জামশেদের প্যারানরমাল ইনভেস্টিগেটর বন্ধুর মতে, এটা সেই কিংবদন্তির শ্বাপদ যা গ্রামের পাশে রহস্যময় জঙ্গলে বাস করছে শত বছর ধরে। সত্যিই কি তাই? নাকি সবছিুর ব্যাখ্যা আরো জটিল? জঙ্গলের ভেতরের পুরনো মন্দিরে অবশেষে কার মুখোমুখি হতে হলো? অপার্থিব শ্বাপদের, নাকি সেই অসীম ক্ষমতাধরের, যে অন্ধকার জগতের রাজপুত্র, অমরত্বের চাবি যার হাতের মুঠোয়, লৌকিক পৃথিবীর অলৌকিক অধিশ্বর হয়ে উঠতে যার দরকার আর মাত্র একটা... এই রহস্য উদঘাটন করতে হলে ডুব দিতে হবে কোনোমতে প্রাণ হাতে নিয়ে ফেরা এজজনের অবিশ্বাস্য জবানবন্দীর গভীরে। পাঠ-পর্যালোচনাঃ লেখক নাবিল মুহতাসিমের প্রথম উপন্যাস। এর আগে কয়েকটি অনুবাদের কাজ করেছেন। মৌলিক উপন্যাস এটাই তার প্রথম। সেই হিসেবে কাজ ভালো ছিল। গল্পটি মূলত হরর জনরার। সেই সাথে থ্রিলার মেশানো। শুরুটা ভালো লেগেছে। গল্পের প্রধান চরিত্র জমশেদকে বেশ শক্ত পক্ত মানুষ হিসেবেই মনে হয়েছে। অপর চরিত্র শিপ্লুর ক্যারেক্টারাইজেশনটাও ভালো ছিল। গল্প মূলত উত্তম পূরুষে লেখা। তবে গল্পের মাঝখানে মাঝখানে শিপ্লুর কিছু প্যারানরমাল কেস-এর বর্ণনা পাওয়া যায়। তবে সেগুলোও উত্তম পুরুষে লেখা। তাই কিছু কিছু জায়গায় গুলিয়ে যায়। এছাড়া আরো কয়েকটি জায়গায় খটকা লেগেছে... ১। গল্পের প্লটটা দারুণ ছিল। তবে উপস্থাপনার দিকে দুর্বলতা ছিল। ২।অধ্যায়ের মাঝখানে মাঝখানে প্যারানরমাল কেসগুলোর বর্ণনা না দিলে ভাল হত। এগুলো আসল কাহিনী থেকে মনযোগ বিচ্ছিন্ন করেছে। ৩। কয়েক জায়গায় অধ্যায় জোর করে বাড়ানো হয়েছে বলে মনে হয়েছে আমার। ৪। সব প্যারানরমালিটি কি গ্রামেই হয়? শহরে কিছু হয় না? ৫। গল্পের লাস্টের টুইস্টটা অপ্রত্যাশিত ছিল। তবে কেন যেন তার সপক্ষে লেখক পর্যাপ্ত যুক্তি দেখাতে পারেন নি। ৬। জামশেদ চরিত্রের বয়স অনুযায়ী কার্যকলাপের ভেতর পার্থক্য পেয়েছি। কেমন যেন ছেলেমানুষী একটা ব্যাপার ছিল। তবে এসব কিছুর ভেতরেও গল্পের একটা ব্যাপার আসলেই ভালো লেগেছে। সেটি হলো ভয়। লেখকের হরর থ্রিলারের প্রতি বেশী টান এটা গল্প পড়লেই বোঝা যায়। গল্পের ভেতর ভয় ব্যাপারটা বেশ ভালোভাবেই টের পেয়েছি। খুব সাধারণ ঘটনাকেও লেখক বেশ সুন্দরভাবে ভৌতিক কায়দায় উপস্থাপণ করতে পেরেছেন। এখন পর্যন্ত বাতিঘরের মৌলিক হরর থ্রিলারের মধ্যে এই একটি বইটিতেই বেশ ভয় পেয়েছি। ও হ্যা! গল্পের আরো একটি দিক ছিল। সেটি হলো সুপার ন্যাচারাল দিক। এই দিকটাও লেখক বেশ ভালো লিখেছেন। তবে আরেকটু আকর্ষনীয় হতে পারতো! এবার আসি বইয়ের বাহ্যিক দিকের কথায়। বাতিঘর প্রকাশনী থেকে এবছর বইমেলায় বের হয়েছে বইটি। গায়ের মূল্য রাখা হয়েছে ২০০টাকা। দেখতে বেশ সুন্দর বইটি। প্রচ্ছদটিও বেশ আকর্ষনীয়। তাছাড়া কাগজ, বাইন্ডিং, ছাপার মান বরাবরই চমৎকার। সব শেষে বলতে চাই, প্রথম উপন্যাস হিসেবে লেখক নাবিল মুহতাসিম একেবারে খারাপ লেখেন নি। পাঠকের ভালো লাগবে। তাই যারা এখনো পড়েন নি, পড়ে ফেলুন। :) আর হ্যাঁ! একটা অনুরোধ! বইটি রাত ১২টার পর পড়া শুরু করবেন! কথা দিচ্ছি! ভয় পাবেন! ;) রেটিংঃ ৪/৫
Thriller
1
"নাট বল্টু"এই দুই ক্ষুদে বিজ্ঞানী আর দার্শনিককে নিয়ে নানা মজাদার বিস্ময়কর ঘটনায় সাজানো মজার উপন্যাস ‘নান্টুবল্টু’ বল্টু খুবি মেধাবী।কিভাবে কিভাবে জানি বইয়ের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে গল্পটা শুনতে শুনতে বল্টু পড়া শিখে গেল, সে কোনো অক্ষর চেনে না কিন্তু পড়তে পারে। কি অদ্ভুত। এর থেকে বিচিত্র ব্যাপার আর কী হতে পারে?আর সেই সাথে রয়েছে নানটূ । বল্টুর সব সময়ের সঙ্গী নান্টু কখনো রাগে না। তার ভেতর রাগ ক্রোধ-হিংসা এসব কিছু নেই। মহামানব দার্শনিক ধরনের। কিন্তু বয়স তার ছয়। ছয় বছরের এই ছোটখাটো মানুষটা পুরোপুরি একজন দার্শনিক। যদি ছোট বাচ্ছাদের দাড়ি উপায় থাকত, তাহলে দেখা যেত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো নান্টুর লম্বা লম্বা পাকা দাড়ি। নান্টুর পাকা দাড়ি নেই সত্যি, কিন্তু তার কথাবার্তা-ভাবভঙ্গি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে কোনো অংশে কম নয়। এদিকে ১০ বছর বয়সের বল্টু এই বয়সেই থিওরি অফ রিলটিভিটি শিখে ফেলে।আর যখনি কোন বিজ্ঞান বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর খুজে পায় না,তখনি সেটি উদ্ভাবন করতে আবিষ্কার করতে শুরু করে। এভাবে একদিন দেখা হয় পাশের বাড়ির নান্টুর সাথে।এবং আস্তে আস্তে তারা বন্ধু হয়ে যায়। আর ঘটায় আজব সব এক্সপেরিমেন্টবল্টু । এক ক্ষুদে বৈজ্ঞানিকের নাম বল্টু।। তার গবেষণার বিষয়বস্তু আশেপাশের সবকিছু । সে প্রশ্ন করতে ভালবাসে । সবকিছু নিয়ে ।তার প্রশ্নের অভাব নেই।জানার আগ্রহের শেষ নেই। আর ভালোবাসে গল্প। সে তার আম্মুর কাছ থেকে গল্প শুনতে ভালবাসে । বল্টুর আম্মু তাকে গল্পের বই থেকে গল্প পড়ে শুনাতে শুনাতে এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে গেল । বল্টু কেমন করে কেমন করে জানি অক্ষর না চিনেই পড়তে শিখে গেল এবং ভারি ভারি বই পড়ে শেষ করে ফেলল । আর সাথে তার বিচিত্র আর মজার সব গবেষণা তো আছেই । আর নান্টু হল বল্টুর সহযোগী । বল্টু যেমন মহান ক্ষুদে বৈজ্ঞানিক তেমনি নান্টু হল মহান ক্ষুদে দার্শনিক । ছোট্ট এই ছেলেটির চাল-চলন,কথা- বার্তা সবকিছুতেই একটা দার্শনিক ভাব। বল্টু নানারকম এক্সেপেরিমেন্ট করে আর তার সহকারী হিসেবে থাকে নান্টু । নান্টু আবার কিছু বুঝতে না পারলে অনেক প্রশ্নও করে বল্টুকে । বল্টু তখন তাকে সেটা বুঝিয়ে দেয় ! তাদের এক্সপেরিমেন্টগুলো খুব মজার-মশা কেন ভূত হবে না,দেশে এত লোকের কাপড়ের অভাব অথচ মেয়েদের কেন এত লম্বা শাড়ি পড়তে হবে। টিউব থেকে পেস্ট বের করার পর তা আবার ঢুকিয়ে ফেলতে চেষ্টা,ফ্যানের রিঙের সাথে শাড়ি পেঁচিয়ে তা দিয়ে ঝুলে থেকে অ্যাস্ট্রোনাট হবার চেষ্টা করে । এম্বনকি ল্টু নান্টুর বড় আপু মুনিয়াকে দিয়ে আইনস্টাইনের থিওরি অফ রিলিটিভিটি সংক্রান্ত একটা গবেষণাও করে ফেলে ! নান্টুর আমেরিকা থেকে আসা "সায়েন্টিস্ট" সবুজ ভাইয়াকেও বল্টু পুরাই বোকা বানিয়ে দেয় । শেষে ছোটখাট একটা অ্যাডভেঞ্চার দিয়ে শেষ হয়েছে মজার এ বাচ্চাদের উপন্যাসটি ।
Childrens-Book
2
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই: কাজলের দিনরাত্রি লেখক: মুহম্মদ জাফর ইকবাল মুল্য: 140 টাকা ধরণ: শিশু-কিশোর উপন্যাস প্রকাশনা: অনুপম প্রকাশনী যাদের অনেক অনেক টাকা থাকে, তারা সাধারণত সুখী হয়, কিন্তু সত্যি কী সবাই কী সুখী? দূর থেকে দেখলে হয়তো আনন্দ আর আনন্দ চোখে পড়ে, কিন্তু হয়তো তাদের অভিমান, শোক, সাধারণ মানুষের চেয়ে অনেক বেশি থাকে। এই প্লটের উপরই এই উপন্যাসটি লেখা হয়েছে। রিভিউ: কাজল এক ধনাঢ্য পরিবারের সন্তান। স্বাভাবিক ভাবে তার কৈশোর জীবন আনন্দের সাথে কাটছিল। কিন্তু সে আনন্দঘন সময়ে এসে হয় ছন্দপতন। তার বাবার সাথে তার মায়ের সম্পর্কের অবনতি ঘটে, কাজল তার মায়ের সাথে তার বাবাকে ছেড়ে চলে যায়। ফলে কাজল বড়লোকি আয়েশ ছেড়ে হঠাৎ ই সে এসে হাজির হয় এক নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবেশে। ইংলিশ থেকে বাংলা মিডিয়ামের স্কুল, মধ্যবিত্ত বন্ধু, এসবকিছু নিয়েই তার সময় ভালোভাবে কেটে যাচ্ছিল। কাজল তার আব্বুকে দেখাতে চেয়েছিল যে টাকা ছাড়াও মানুষ ভালোভাবে চলতে পারে, তা সফল হয়ে গিয়েছিল প্রায়। কিন্তু হঠাৎই তা ভেস্তে যাবার উপক্রম হয়, বেচে থাকার জন্য কাজলের প্রয়োজন পরে বিশ লক্ষ টাকা। কি সেই প্রয়োজন? কিভাবে ম্যানেজ করবে সে? জানার জন্য পড়ুন এই উপন্যাস। পাঠপ্রতিক্রিয়া: কাজল নামক কিশোরকে কেন্দ্র করেই এ উপন্যাসটি। কিশোর উপন্যাসের প্রায় সকল গুণ এতে বিদ্যমান। আমার কাছে ভালো লেগেছে। আমার হিসেবে এর রেটিং ৪/৫
Childrens-Book
2
আমাকে সবথেকে আকৃষ্ট করেছে ১৯৫২ সালে জেলে যাওয়ার ঘটনাটি । যেখানে তার আমরণ অনশন সত্যি অবাক করার মত । বঙ্গবন্ধুকে জানার জন্য এই বইটি এক অনন্য সাক্ষ্য বহন করে । আর যাই হোক সত্য ইতিকথা জানা আমাদের প্রয়োজন । সুলভ মুল্যে ব্যাবস্থা করে দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ ।
Political
3
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মে আবার দেশভাগ। না, নতুন করে কোন দেশ ভাগ হয়নি, তবে যে বইটা নিয়ে কথা বলতে যাচ্ছি তার বিষয়বস্তু দেশভাগ নিয়ে। দেশভাগের সময়ের মানুষের অবস্থা, মনোভাব, ঘটে যাওয়া নানা ঘটনা নিয়ে এই বই। কিন্তু সেসব খুব বড় পরিসরে নয় বরং একটি চরিত্রের দেখা এবং তার সাথে ঘটে যাওয়া ঘটনা নিয়ে সাজানো। শ্রীমন্ত নামে ছেলেটির বয়স তখন কেবল ১৮ বছর। দেশভাগের ডামাডোলে সে গ্রাম থেকে ঢাকায় আসে একটা ‘মাইগ্রেশন সার্টিফিকেট’-এর আশায়। সে কাগজতা যোগাড় করতে পারলে ভারতে গিয়ে সহজে বসবাসের, কাজের জায়গা পাওয়া যাবে। গ্রামের ছেলে শ্রীমন্তের ঢাকায় আসা, চোখের সামনে নতুন এক দিগন্ত খুলে যাওয়া, পৃথিবী অনেক বড় হয়ে ধরা দেয় তার কাছে। পুরনো ঢাকার আরমানিটোলায় এক আত্মিয়ের বাসায় ওঠার কথা শ্রীমন্তের। সেখানে গিয়ে দেখলো তারা মাসখানেকের জন্য অন্যত্র চলে গেছে। তখন থেকে শুরু হয় অজানা অচেনা ঢাকা শহরে তার একার সংগ্রাম। সে সময়ের ঢাকা আজকের ঢাকার মতো স্বার্থপর, খরুচে শহর না হলেও একটা গ্রামের ছেলের টিকে থাকা সহজ ছিল না। তবু মানসিক শক্তিতে টিকে থাকে শ্রীমন্ত কিন্তু তার মন ভেঙে যায় যখন দেখে মাইগ্রেশন অফিসে বহু মানুষ লাইন দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে কিন্তু আনুলুল্য পাচ্ছে ঢাকার কালু মাস্তানের কাছে যারা টাকা দিয়েছে কেবল তারাই। ঢাকায় শ্রীমন্তের অবস্থান, পথে ঘুরে বেড়ানোর পাশাপাশি তার স্মৃতির মাঝে ঢুকে পরে আমরা দেখতে পাই তার জীবনের পুরনো দিনগুলো। তার বাবা পণ্ডিত ব্রাহ্মণ যার খ্যাতি আশেপাশের অনেক গ্রামে। কিন্তু সে পরিবারটির অবস্থা কেমন করে পড়ে যায়। পাশাপাশি গ্রামের অন্যান্য মানুষের গল্প। শ্রীমন্তের হিন্দু/মুসলমান মানুষের সহ ও বিপরীত অবস্থানের কথা। মূলত কমলেন্দু ভট্টাচার্য তার নিজের জীবনের গল্পই তুলে এনেছেন ‘যখন কুয়াশা’ উপন্যাসে। শ্রীমন্ত আর কেউ না, বরং শরিয়তপুরের ধানুকা গ্রামের ছেলে কমলেন্দু, যাকে এক সময় এই ভূখণ্ড ছেড়ে ভারতে চলে যেতে হয়েছিল। তিনি দেখেছেন সে সময়ের গ্রামীণ সমাজের মানুষের মধ্যে পরিবর্তন। দেখেছিলেন হঠাৎ ক্ষমতা পাওয়া মানুষের দাপট। ভেঙে পড়া সমাজ ব্যবস্থায় মানুষের অবক্ষয়। সে গল্পই তিনি লিখেছেন। ধোঁয়া ধোঁয়া সময়ের উপখ্যানের নাম দিয়েছেন ‘যখন কুয়াশা’। সে সময়টা বুঝি কুয়াশা ঢাকা সকালের মতোই ছিল যেখানে কোন দিশা পাওয়া যায় না। কমলেন্দু ভট্টাচার্যের লেখনী ভালো। গল্প বলেন খুব স্বাভাবিক গতিতে। শ্রীমন্তের চলমান গল্পের চেয়ে তার স্মৃতি থেকে বা পরবর্তীতে গ্রামে গিয়ে দেখা ঘটনাগুলো গভীর মনোযোগ দাবি করে। দেশভাগ নিয়ে তার পর্যবেক্ষণ দারুণ, কিন্তু সে পর্যবেক্ষণ যা তিনি এই বইয়ে রেখেছেন তা গ্রামীণ সমাজের। কেন জানি না কমলেন্দু বাবুর গল্পগুলো মিলে যায় মিহির সেনগুপ্তর ‘বিষাদবৃক্ষ’-র সাথে। একথা সত্য, দুটো বইয়েই গ্রামীণ সমাজের কথা এসেছে কিন্তু কোথাও কোথাও মনে হয় কমলেন্দু বাবু একদম বিষাদবৃক্ষ থেকেই কথা বলছেন। বইটির বাংলাদেশ সংস্করণ করেছে ‘দ্যু প্রকাশন’। পেপারব্যাক সাইজের ২৭২ পাতার বইটির দাম ৩৫০ টাকা কোন যুক্তিতে হয় সেটা বোধগম্য না।
Fiction
0
বইয়ের নাম: সাম্ভালা ট্রিলজি লেখক: শরীফুল হাসান জনরা: ফ্যান্টাসি-অ্যাডভেঞ্চার থ্রিলার প্রকাশনী: বাতিঘর প্রকাশনী প্রকাশকাল: বইমেলা ২০১২, ২০১৩, ২০১৪ প্রচ্ছদ: ডিলান পৃষ্ঠাসংখ্যা: মোট আটশ’ পৃষ্ঠা . জনরা পরিচিতি: ফ্যান্টাসি হলো সাহিত্যের এমন একটি জনরা, যাতে কমবেশি সবসময়ই কিছু মিথ, ম্যাজিকেল টার্ম তথা অবাস্তব সব কাণ্ড দেখা যায়; যেগুলোকে ঠিক অলৌকিক বলেও চালানো যায় না। আর অ্যাডভেঞ্চার থ্রিলার হলো থ্রিলারের এমন একটি জনরা (genre), যেখানে অ্যাডভেঞ্চারধর্মী গল্প, যেমন ভ্রমণ, বিদেশবিভুঁইয়ের কাহিনি ইত্যাদি প্রাধান্য পায়। অনেক সময় থ্রিলার আর ফ্যান্টাসি একসূত্রে গেঁথে যায়। তেমনই একটি বই হলো ‘সাম্ভালা ট্রিলজি’, যেখানে ফ্যান্টাসির পাশাপাশি স্থান পেয়েছে অ্যাডভেঞ্চার ও থ্রিলারের আমেজও। . কাহিনি-সংক্ষেপ: সাধারণত তিনটি বইয়ের সম্মেলনকে ট্রিলজি বলা হয়। ট্রিলজির সব বইয়েরই বিষয়বস্তু এক থাকে। সে অনুসারে সাম্ভালা ট্রিলজিও তিনভাগে বিভক্ত: ‘সাম্ভালা’, ‘সাম্ভালা দ্বিতীয় যাত্রা’ ও ‘সাম্ভালা শেষ যাত্রা’। . সাম্ভালা। কারো কাছে এক মিথ, কারো কাছে ধোঁয়াশা, আবার কারো কাছে এক বিশ্বাসের নাম। কিছু মানুষ নেমেছে এই সাম্ভালার খোঁজে। নেমেছেন হাজার বছরের এক পরিব্রাজক, শয়তানের উপাসক কিংবা রাশেদের মতো সাধারণ কিছু ছেলে। আরো আছে ড. কারসন, নিজের জীবন যৌবন সাম্ভালার পেছনেই কাটিয়ে দিয়েছেন তিনি। . সাম্ভালা: ছোট্ট এক গ্রাম থেকে কাহিনির শুরু। হাজার বছরের পরিব্রাজক তার সেই ‘প্রায় অমরত্বের’ বইয়ের সন্ধানে নেমেছেন। শয়তানের উপাসকদের হাত ঘুরে সেটি চলে যায় সাধারণ ছেলে রাশেদের হাতে। শয়তানের সাথে বিশ্বাসঘাতকতা করে মারা যাওয়া রাশেদের বন্ধুর খুনের দায়ে পুলিশ খুঁজছে তাকে। খুঁজছে সেই শয়তানের উপাসকরাও। খুঁজছেন সেই পরিব্রাজক। সাম্ভালা দ্বিতীয় যাত্রা: ইতিহাসের হাত ধরাধরি করে এগিয়ে চলে কাহিনি। সেই পরিব্রাজক সাম্ভালার খোঁজে নেমে পড়েন বিদেশে। পরিব্রাজকের সমক্ষমতার অধিকারী হন্যে হয়ে খুঁজছে তাকে, পেলেই হত্যা করবে। এক গুপ্তধন উদ্ধারে জড়িয়ে পড়েছে রাশেদ আর বন্ধু রাজু। ড. কারসন আর আরেফিন নেমেছেন সাম্ভালার খোঁজে। সাম্ভালা শেষ যাত্রা: বিদেশবিভুঁইয়ে এসে হারিয়ে যান ড. আরেফিন। পরিব্রাজকের চিরশত্রু তার ঘাড়ের ওপরই নিশ্বাস ফেলছে। আরেফিনকে খুঁজতে ব্যস্ত রাশেদ, রাশেদকে হত্যা করতে ব্যস্ত সেই শয়তানের উপাসকেরা। ড. কারসনরা সাম্ভালার কাছাকাছি। সবগুলো সমীকরণ একসাথে মিলিত হলে কী ঘটবে? একটি মহাবিস্ফোরণ? . পাঠের পোস্টমর্টেম: চমৎকার প্লট, তার চাইতেও চমৎকার বর্ণনা। এক কথায় এটিই বলা যেতে পারে। বইটাকে কোন্ জনরায় ফেলা যায় তা নিয়ে আমি নিজেই হিমশিম খাচ্ছিলাম। কখনো মনে হচ্ছিলো থ্রিলার, কখনো ফ্যান্টাসি। ইতিহাসের অনেক খুঁটিনাটি উঠে এসেছে বইতে। একসাথে অনেক বিষয় নিয়ে কাজ করেছেন লেখক, কিন্তু খেই হারাননি একবারও। লেখায় যথেষ্ট পরিণতির ছাপ ছিলো। ইতিহাসের বিষয়গুলো থেকে অনেক কিছু জানতে পেরেছি, চমৎকৃত করেছে পরিব্রাজকের নানারকম দর্শন। সবমিলিয়ে টানটান উত্তেজনায় ভরপুর, চরম উপভোগ্য একটি বই। . কিছু অংশ বেশ খারাপ লেগেছে। বাতিঘর প্রকাশনীর ক্ষেত্রে বানান ভুল নিত্যদিনের কাহিনি, তাই সেদিকে পা বাড়াচ্ছি না। কিছু ক্ষেত্রে ডিটেইলিংয়ের অভাব ছিলো। বর্ণনা দেওয়া হয়নি কীভাবে রাশেদ সিএনজিওয়ালার দক্ষতায় বেঁচে গেলো, কিংবা কয়েকবার লাফ দিয়েও অক্ষত থাকলো। আবার কিছু ক্ষেত্রে অনেক বেশি জল ঘোলা করা হয়েছে। দ্বিতীয় যাত্রায় গুপ্তধন নিয়ে পুরো বই শেষ করার কোনো দরকারই ছিলো না। কিছু জায়গায় নামের গোলমাল, সময়ের গোলমাল ইত্যাদি কাহিনির ঔজ্জ্বল্যকে অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে। . যাই হোক, এসব নেগেটিভ ব্যাপারস্যাপার দেখে ভুল কিছু ভেবে বসবেন না। কথা দিতে পারি, এর আগে বাংলাদেশে এমন ফ্যান্টাসি অ্যাডভেঞ্চার ট্রিলজি আপনি আগে পড়েননি। . হ্যাপি রিডিং :-)
Thriller
1
বাংলায় লেখা সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ কিশোর উপন্যাসগুলোর একটি। সেই ক্লাস ফোর-ফাইভে থাকতে প্রথমবার পড়া, এরপর যে কতো অসংখ্যবার পড়া হয়েছে কিন্তু এখনো একটুও পুরানো হয়নি, কখনো হবেও না। গল্পের মূল চরিত্র আবীর আর বাবুর জাহাজের কেবিনের মত চিলেকোঠায় বসে সারাদিন বইয়ের পাতায় আর কল্পনায় পৃথিবীময় অ্যাডভেঞ্চার করা, কোন এক অভিযানে বেরিয়ে পড়ার স্বপ্ন দেখা, ছটফট করা... শেষে একদিন তাদের মনের ইচ্ছা পূরণ করতেই যেন সুদূর পার্বত্য চট্টগ্রাম থেকে এলো নেলী খালার চিঠি, বয়ে আনলো নুলিয়াছড়ির দূর্গম পাহাড়ি এলাকায় বেড়াতে যাবার ডাক। সেখানে তারা পেল পাহাড়ের গায়ে পুরানো রহস্যময় এক ভুতূড়ে জমিদার বাড়ি, হার্মাদ জলদস্যুর গুপ্তধন আর পাহাড়ের কোলে হারিয়ে যাওয়া সোনার খনির গুজব; আরো যুক্ত হল জলদস্যুর ভূত, আন্নাকালী পাহাড়ের চূড়ায় গা ছমছমে পোড়ো মন্দির, সন্ধ্যার আলোছায়ায় গাছের গায়ে মড়ার খুলির চিহ্ন আর আধুনিক সোনা চোরাচালানকারীদের আনাগোণা। আবীর-বাবুর একদম স্বপ্নের রঙ্গে রাঙ্গানো অ্যাডভেঞ্চারের জন্য আর কি লাগে? ও হ্যা, বন্ধুত্ব হল ঠিক তাদের বয়সীই দুই প্রাণবন্ত রোমাঞ্চপ্রিয় কিশোরী ললি-টুনির সাথে! সবমিলিয়ে দেশী পটভূমিতে সম্পূর্ণ দেশী কাহিনীর একটি নিখুঁত অনিন্দ্যসুন্দর কিশোর রহস্য-অ্যাডভেঞ্চার উপন্যাসের সমস্ত উপাদানই উপস্থিত, সেই সাথে শাহরিয়ার কবিরের শ্রেষ্ঠ লেখনির নিদর্শন আর আবীর-বাবু-ললি-টুনির মাধ্যমে বাংলা সাহিত্যের অবিষ্মরনীয় কিছু কেন্দ্রীয় কিশোরবয়সী চরিত্রের সৃষ্টি। ছোটবেলায় যখন পড়েছিলাম তখন থেকে শুরু করে এখনো বইটা পড়লে বা পড়ার স্মৃতি মনে এলে উদাস হয়ে যাই, চারপাশের এই ইট-পাথরের বিবর্ণ শহরটাকে ছেড়ে আবীর-বাবুদের মত ছুটে যেতে ইচ্ছা করে নির্জন কোন পাহাড়ি এলাকায়, শিহরিত হতে ইচ্ছা করে আধিভৌতিক পরিবেশে পাহাড়ি পথে হার্মাদ গুপ্তধন বা সোনার খনির সন্ধানে আর রহস্যময় স্মাগলারদের সাথে টক্করে। যেকোন বাংলাভাষী পাঠকের জীবনে অন্তত একবার এমন মনোমুগ্ধকর একটি বাংলাদেশি কিশোরোপন্যাস উপভোগ করা উচিত, শৈশব-কৈশোর পেরিয়ে আমার মত তিরিশোর্ধ হয়ে মনের গহীনে হারিয়ে যাওয়া সেই দুরন্ত রহস্য-রোমাঞ্চপ্রিয় বালকটিকে নতুন করে খুঁজে পাবার জন্যে হলেও।
Thriller
1
একটি দেশের স্বাধীনতার সংগ্রামে কীভাবে সে দেশের কিশোররা নেতৃত্ব প্রদান করতে পারে তার একটি চমত্‍কার বর্ণনা পাওয়া যায় এ বইটিতে । কিশোরদের দুরন্তপনার পাশাপাশি তাদের দেশপ্রেম ও দেশাত্মবোধের চরম একটি নমুনা তুলে ধরেছেন লেখক । বইটি উত্তম পুরুষে লেখা ।বইয়ে লেখক নিজেকে ইবু নামে পরিচয় দিয়েছেন । ইবু অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া এক কিশোর। বইয়ের শুরুতে দেখানো হয়েছে ক্লাসে এক নতুন মুখের আগমন । পরবর্তী এই নতুন মুখটিই পরিণত হয় কাহিনীর কেন্দ্রীয় চরিত্রে। ক্লাসের সকলের সমর্থনে তার নাম রাখা হয় রাশেদ। ধীরে ধীরে নতুন বিদ্যাপীঠে রাশেদের বেশ কিছু বন্ধু জুটে যায় । তাদের নিয়ে সে মেতে থাকে নানা রকম কাজে । লেখক ১৯৭১ এর মহান মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে বইটির কাহিনী এগিয়ে নিয়েছেন । রাশেদ , ইবুদের স্কুলে পাকিস্তান সেনাবাহিনী ক্যাম্প করে। শুরু হয় তাদের ছোট্ট শহরজুড়ে নিষ্ঠুরতা আর নৃশংসতা। ঘর ছেড়ে পালাতে বাধ্য হয় ইবুর বন্ধু দিলীপের পরিবারের মতো হাজার হাজার মানুষ । রাশেদ , ইবু , ফজলু আর আশরাফ মিলে শুরু করতে থাকতে মুক্তিযোদ্ধাদের বিভিন্ন কার্যক্রমে সহযোগিতা প্রদান। ইবুদের পাড়ার শফিক ভাই যোগ দেন মুক্তিযুদ্ধে। তাদেরই পাড়ার কলেজ পড়ুয়া অরু অপেক্ষায় থাকে শফিকের ঘরে ফেরার। রাশেদরা মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করতে করতে একসময় সত্যিকার অর্থে যোদ্ধায় পরিণত হয় ।। তারা অস্ত্র চালনা শেখে , অংশ নেয় বিভিন্ন অপারেশনে । পাকিস্তানি ক্যাম্প আক্রমণে তারা শফিককে সঙ্গ দেয় । একসময় শফিক ধরা পড়ে নির্মম রাজাকারদের হাতে । আহত শফিককে উদ্ধার করে সেই দুঃসাহসী চার কিশোর । তাদের এই অভিযানের মাধ্যমে লেখক কিশোরদের বিচক্ষণতাকে তুলে ধরেছেন । কিছুদিনের মধ্যে শহরে কিশোরদের অপারেশনের খবর জানাজানি হয়ে যায় । ভারতে পাড়ি দেয় ইবুর পরিবার । শহরে একা থাকে রাশেদ । স্বাধীন দেশে ফিরে এসে ইবু জানতে পারে রাশেদের মৃত্যুর কথা । বইটির কাহিনীর পরিসমাপ্তি ঘটে অদম্য কিশোর মুক্তিযোদ্ধাটির করুণ মৃত্যুর মাধ্যমে । তাকে রাজাকার কমান্ডার গুলি করে হত্যা করে । রাশেদের মৃত্যু ঘটে , কিন্তু সে বেঁচে থাকে ইবুর মনে, বেঁচে থাকে এ দেশবাসীর মনে । বইটির প্রতিটি কাহিনী লিখিত হয়েছে চমত্‍কারভাবে । বইটির মাধ্যমে লেখক তাঁর সুনিপুণ লেখনী শক্তির পরিচয় দিয়েছেন । বইটি পাঠের সময় মুক্তিযুদ্ধের বাস্তব একটি প্রতিচ্ছবি ভেসে ওঠে পাঠকের মনে । কিশোরদের দুষ্টুমী আর কৌতুকের মাধ্যমে লেখক তাঁর রসিক মনেরও একটি পরিচয় তুলে ধরেছেন এ বইয়ে । শফিক-অরুর প্রেমের মাধ্যমে তিনি নিজের রোমান্টিকতাকেই উপস্থাপন করেছেন । মুক্তিযুদ্ধের মতো সশস্ত্র একটি সংগ্রামে কিশোরদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ বর্তমান প্রজন্মকে দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ করে তুলবে । মৃত্যুর পরও রাশেদকে স্মরণ করার মাধ্যমে মুক্তিযুদ্ধের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর প্রতি ইঙ্গিত করা হয়েছে । লেখক তুলে ধরেছেন যুদ্ধপরাধীদের নির্মমতার কথা যা বর্তমান প্রজন্মকে যুদ্ধাপরীধীদের বিচার আদায়ে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ করে তোলে । লেখক অত্যন্ত সূক্ষ্মভাবে এ কাজগুলো সম্পাদন করেছেন । এক্ষেত্রে লেখকের স্নায়ুশক্তির প্রশংসা না করলেই নয় । সর্বোপরি অত্যন্ত চমত্‍কার ভাষায়, সাবলীলভাবে, আনন্দ-বেদনা, বন্ধুত্ব, দেশপ্রেম , সংগ্রামী চেতনা, দেশদ্রোহিতা ও মুক্তিযুদ্ধের বাস্তবতার এক দারুণ সমন্বয় ঘটেছে এ বইটিতে। বইটি বারবার পড়লেও মনে হবে এক বই কখনো পড়া হয়নি ।
War
5
তেরো বছরের একটা ছোট্ট মেয়ে । টুম্পা । সে ছবি আঁকতে ভালবাসে । অসম্ভব সুন্দর ছবি আঁকে । মায়ের সাথে সে আমেরিকায় থাকে । কিন্তু তার মনটা যেন সবসময় পড়ে থাকে বাংলাদেশে । সে ইন্টারনেটে বাংলাদেশ নিয়ে অনেক কিছু পড়ে , চেষ্টা করে অনেক কিছু জানার । একটা আর্ট কম্পিটিশনে বি ক্যাটাগরিতে সেকেন্ড হয়ে প্রাইজ পেল দেড় হাজার ডলার । সেই ডলার খরচ করে সে বাংলাদেশে আসার বিমান টিকেট কাটল । তারপর পা বাড়ালো বাংলাদেশের পথে । একা । বাংলাদেশে সে তার হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজতে এসেছে । বুলবুল রায়হান । নামকরা একজন চিত্রশিল্পী । পাগল বলে টুম্পার মা টুম্পাকে নিয়ে বহুদিন আগেই সব ছেড়েছুড়ে আমেরিকা চলে গেছেন । তার হারিয়ে যাওয়া বাবাকে খুঁজে বের করে টুম্পা । স্কিত্‍জফ্রেনিয়া রোগে আক্রান্ত পাগল হয়ে যাওয়া মানুষটিকে একটা নতুন জীবন দিল তার ছোট্ট মেয়েটি । বাবাকে কাছে টেনে সে তার বুকের ভেতর জমে থাকা ভালবাসাটুকু উজার করে দিল । যে মানুষটি মরে গেছে বলে সবাই জানত সেই মানুষটিকে নতুন করে বাহিরের দুনিয়ার সাথে পরিচয় করিয়ে দেওয়া ছোট্ট মেয়েটির নাম টুম্পা । পুরো উপন্যাস যেন হারিয়ে যাওয়া বাবা আর মেয়ের মহা মিলনের হৃদয়বিদারক এক জীবন্ত উপাখ্যান !
Childrens-Book
2
থ্রিলারের মধ্যে এই সহস্রাব্দে বিশ্বব্যাপী সবচেয়ে বেশী প্রথমে আলোড়ন তুলেছিল যে বই তা হল ২০০৩ এ প্রকাশিত ড্যান ব্রাউনের দ্য ডা ভিঞ্চি কোড। আর গত দশকের শেষের দিকে এসে পুরোপুরি নতুন একজন লেখক আবার আলোড়ন তুলল তাঁর রচিত থ্রিলার উপন্যাস নিয়ে। তাও আবার বইগুলা প্রকাশিত হয়েছে লেখকের মৃত্যুর পর। গত পাঁচ বছরের থ্রিলার ফিকশনের অন্যতম আলোচিত ট্রিলজি মিলেনিয়াম সিরিজ। লেখক স্টিগ লারসনের এই সিরিজের প্রথম বই ইন্টারন্যাশনাল সেনসেশন দ্য গার্ল উইথ দ্য ড্রাগন ট্যাটু নিয়েই এই রিভিউ। মিকাইল ব্লমকভিস্ট, সুইডেনের ফাইনান্সিয়াল ম্যাগাজিন মিলেনিয়ামের প্রকাশক এবং অন্যতম পার্টনার। ২০০২ সালের ডিসেম্বরে ব্লমকভিস্ট সুইডেনের অন্যতম শিল্পপতি হান্স-এরিক বিরুদ্ধে রিপোর্ট লিখে মানহানির মামলায় হেরে যায়। তাঁর মাথার উপর শাস্তির খড়গ। সাংবাদিক সমাজে তাঁর সম্মান ধূলায় মিশে গেল। সে ম্যাগাজিনকে বাঁচানোর জন্য সাময়িক বিরতি নেয় এবং মনে মনে প্রতিজ্ঞা করে এই সম্মানহানির প্রতিশোধের নেয়ার। মামলার রায়ের দিনই ব্লমকভিস্ট সুইডেনের প্রত্যন্ত অঞ্চল হেডেফাস্ট থেকে ভ্যাঙ্গার কর্পোরেশনের সাবেক সিইও হেনরিক ভ্যাঙ্গারের ডাক পায়। ব্লমকভিস্ট হেডেফাস্টের দ্বীপ গ্রাম হেডেবিতে যেয়ে পৌছায়। ব্লমকভিস্টকে প্রস্তাব দেওয়া হল ৪০ বছর আগের এক হত্যা রহস্য উন্মোচনের। যেই রহস্য উন্মোচনের জন্য হেনরিক ভ্যাঙ্গার নিজেই গত ৪০ বছরের প্রতিদিন কাজ করে যাচ্ছেন। পুলিশ, প্রশাসন কারোরই সাহায্যের কোন কমতি ছিল না। কিন্তু কোন খেই তারা পাননি এই রহস্যের। ব্লমকভিস্টকে আরও প্রস্তাব দেয়া হল যদি সে এই রহস্যের উদ্গাঠন করতে পারে তবে হান্স-এরিকের মাথা হেনরিক ভ্যাঙ্গার উপহার হিসেবে দিবে। হান্স-এরিকের পতনের নেশায় উন্মত্ত ব্লমকভিস্ট ৪০ বছরের এই উদ্ভট কেস নিতে অবশেষে রাজি হয়। দৃশ্যপটে লিসবেথ সালান্দার। ছোটখাট গড়নের ২৪ বছরের এক অদ্ভুত তরুণী যে সমাজচ্যুত, যাকে সহজ ভাষায় বলা যেতে পারে প্রবলেম চাইল্ড। কিন্তু তার গুপ্ত পরিচয় সে একজন অসাধারন প্রতিভাবান রিসার্চার। ব্লমকভিস্ট এবং সালান্দার জড়িয়ে পড়ল ৪০ বছরের পুরানো রহস্য উদ্গাঠনে। এই থ্রিলারকে আমি অন্য কোন কিছুর সাথেই তুলনা করতে পারছিনা। এতোটাই অসাধারন মাত্রার মিস্ট্রি-থ্রিলার ইদানীংকালের লেখকদের লেখায় অতটা পাওয়া যায় না। চরম বুদ্ধিদীপ্ত একটি প্লট। কাহিনী এতোটাই ভিন্ন মাত্রার যে বইটি শেষ হওয়ার পর খুব আশ্চর্য হতে হয়। মারাত্মক মাত্রার গতিশীল একটি কাহিনী। যখনই পাঠক কাহিনীর ভিতরে পুরোপুরি প্রবেশ করে যাবে তখন হাত থেকে আর বইটা নামিয়ে রাখতে ইচ্ছা হবে না। অসম্ভব মাত্রার এক সাসপেন্সে ভরপুর এই উপন্যাস । ক্রিস্টি যুগের সাসপেন্স এখন আর তেমন একটা পাওয়া যায় না। কিন্তু সুইডিশ লেখক এতোটাই সুন্দর এবং অবিশ্বাস্যভাবে সাসপেন্স ঢেলে দিয়েছেন এই থ্রিলারে তাতে যে কেউই মুগ্ধ হতে বাধ্য। ৫০/৬০ এর দশকের ক্লাসিক মিস্ট্রি-সাসপেন্স এবং আধুনিক টুইস্টের এক অসাধারন মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন লেখক এই উপন্যাসে।
Thriller
1
একবিংশ শতাব্দির এই প্রতিযোগিতার মাঝে পাঠ্যবইয়ের জ্ঞানের পাশাপাশি একজন ছাত্রের প্রয়োজন বাস্তব জীবনের কিছু কোশল ও হ্যাক সম্পর্কে জানা। আর সেইসব কৌশল ও হ্যাক নিয়েই লিখা "Never Stop learning" বইটি। অনলাইনের মাধ্যমে শিক্ষাকে দেশের প্রত্যেকটি সাধারন শিক্ষার্থীর কাছে পৌছে দেওয়া আয়মান সাদিক বর্তমানে হাজারো তরুনের অনুপ্রেরণা। কিন্তু শুধুমাত্র মানসম্পন্ন একাডেমিক শিক্ষাকে সবার দ্বারপ্রান্তে পৌছে দিয়েই থেমে নেই মানুষটি। ইউটিউব ও ফেসবুকের মাধ্যমে প্রতিনয়তই নতুন নতুন কৌশল ও হ্যাক শেখানোর প্রচেষ্টা করে যাচ্ছে যা একজন শিক্ষার্থীকে প্রকৃতপক্ষেই একজন সফল ও যোগ্য নাগরিক হয়ে গড়ে উঠতে সাহায্য করবে। আর সেসব প্রচেষ্টার নতুন সংযোজন "Never Stop learning" বইটি। বইটিতে আছে একজন সামাদ চাচার গল্প, যিনি দরিদ্র হওয়া সত্তেও জীবনের শেষ দিন পর্যন্ত একটি করে গাছ লাগিয়ে গেছেন। ভোকাবুলারি জয় করতে চাও, সেটার ৫ টি উপায় আছে বইটিতে। ছাত্রজীবনে অর্থ উপার্জনের উপায় থেকে সুন্দর মানসিকতা তৈরীর কৌশল সহ বইটির ৪৭ টি অধ্যায়ের প্রতিটিতেই লুকিয়ে রয়েছে কিছু আইডিয়া ও মেসেজ, যা আমাদের সমাজ জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে থাকতে আমাদের সাহায্য করতে পারে। বর্তমানে আমাদের দেশের ছাত্রসমাজের সবচেয়ে বড় সমস্যা হতাশা। কিন্তু দুঃখের বিষয় সেই হতাশাকে কাটিয়ে সামনে এগিয়ে যাওয়ার আশার আলো দেখানোর মত কেউ নেই। এমন অবস্থায় হতাশা কাটিয়ে জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে সমান ভাবে সফলতা অর্জনের দিকনির্দেশকের ভূমিকা পালন করতে পারে এই বইটি। অত্যন্ত সততা এবং সরলতার সাথে রচনা করা এই বইটি দৃঢ়প্রত্যয়ী তরুনদের উৎসর্গ করে লেখা হলেও বইটি পড়ে সমাজের সব শ্রেনীর ও সব বয়সের মানুষই উপকৃত হবে।
Motivational
6
:::রিভিউ::: দুঃখের তিমিরে যদি জ্বলে তব মঙ্গল- আলোক তবে তাই হোক। মৃত্যু যদি কাছে আনে তোমার অমৃতময় লোক তবে তাই হোক ॥ পূজার প্রদীপে তব জ্বলে যদি মম দীপ্ত শোক তবে তাই হোক। অশ্রু-আঁখি- 'পরে যদি ফুটে ওঠে তব স্নেহচোখ তবে তাই হোক ॥ প্রাচীন তিমির ঘেরা একটি দ্বীপে, রাজকুঠি আগলে একা বসে ছিলেন বৃদ্ধ রাজা। সারাদিকে শুধু আঁধারের গল্প। কোথাও নেই আলো। সেই আঁধারের সিংহ দুয়ার দিয়ে হঠাৎ একদিন প্রদীপ হাতে প্রবেশ করলো দুই রাজকন্যা। জ্বালাল মঙ্গল-আলোক। তাঁরা এলে সমগ্র দ্বীপ জুড়ে বয়ে গেলো ঝড়। সেই ঝড় বর্ষণের নয়, পবনের নয়, সেই ঝড় প্রাণের। ওরা যখন এলো যেন জ্যোৎস্না এসে ভিজিয়ে দিয়ে গেল পুরো দ্বীপের বুকে জমে থাকার সহস্র বছরের আঁধার। আর যেদিন ফিরে যাবার পথে চোখ রাখলো সেদিন সুখানপুর বৃষ্টিকে বলেছিলো, আজ একটা গান শোনাও। তোমার অশ্রুতে আজ শ্রাবণ মেঘের দিনে ভিজিয়ে দাও। বইয়ের নামঃ শ্রাবণ মেঘের দিন লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীর নামঃ সময় প্রকাশন প্রথম প্রকাশঃ ৩০শে নভেম্বর, ১৯৯৪ সুখানপুর, হাওড়ের জলের বুকে ভেসে থাকা একটি দ্বীপ। সেই দ্বীপের মানুষের বেঁচে থাকার অবলম্বন হলো দারিদ্রতা, অশিক্ষা, কুসংস্কার আর সরলতা। বৃদ্ধ ইরতাজুদ্দিন এই দ্বীপের অঘোষিত রাজা। বিশাল কাঠের দোতালা রাজপ্রাসাদে বৃদ্ধের একা বেঁচে থাকাটা যেন এক শাস্তি। কিন্তু একদিন তাঁর এই রাজত্বে একমাত্র ছেলের দুই কন্যা শাহানা এবং নীতু এসে বৃদ্ধকে ঘুণে ধরা অস্তিত্বে যেন প্রাণের সঞ্চার ঘটালো। তরুণী শাহানা আর কিশোরী নীতু, বিপরীত স্বভাবের দুইবোন ইরতাজুদ্দীনের সম্রাজ্য নিয়মগুলো যেন প্রতিদিন ভেঙ্গে দিচ্ছিলো, সেগুলোকে ভরে দিচ্ছিলো অবহেলায়। যখন গ্রামের ঢোল বাদক পরাণের স্ত্রী দুর্গা সন্তান ধারন করতে গিয়ে মৃত্যুর শেষ সীমায় পৌছে গিয়েছিলো তখন ডাক্তার শাহানা সব আভিজাত্যকে পিষে দিয়ে দুর্গার সন্তানকে নিয়ে আসে পৃথিবীতে। সেই ঘটনায় গ্রামে প্রতিটি মানুষের হৃদয়ে যেন ভরিয়ে দেয় আলোর শিখায়। সুখানপুরের বাউন্ডুলে কিন্তু অকপট গায়ক মতি মিয়া, শাহানা আর নীতুর সম্মানে আয়োজন করে গানের জলসা। আপাতদৃষ্টিতে গ্রাম্য গানের জলসা নিয়ে শাহানার সংশয় ছিল। কিন্তু মতি মিয়ার কন্ঠে যখন শব্দ টেউ তুললো, মরিলে কান্দিও না আমার দায়, ও যাদুধন। মরিলে কান্দিও না আমার দায় নশ্বরতার এই সত্য যেন শাহানার ভেতরের বহু দিনের ঘুমন্ত এক নারী সত্ত্বাকে জাগিয়ে তুললো। যে বড় ডাক্তার হতে চায় না, চায় না বড় ঘরের কারো অর্ধাঙ্গিনী হয়ে সংসার নামক চক্রে জীবন পাড়ি দিতে। সে শুধু চায় মুক্তি, এই নশ্বর জীবনে মুক্তির অবিনশ্বর আলোয় হারিয়ে যেতে। শাহানা ভাবে কেমন হয় যদি সে থেকে যায় সুখানপুরে? কেমন হয় যদি মতি মিয়ার গানের দলে গান গেয়ে কাটিয়ে দেয় বাকীটা সময়? সুখানপুরে আরেকটি মেয়ে ছিল। ঠিক শাহানার মত। তবে সে রাজকন্যা নয়। গবীর ঘরের সন্তান। শাহানার মত সেও মতিও সুর শব্দের স্পর্শে হয়েছিলো বিদ্রোহিনী। কিন্তু কেউ কখনো কুসুমকে জানতে পারেনি। শাহানাকে জানার জন্য অন্তত তাঁর আশপাশের মানুষগুলো চেষ্টা করেছিলো। কিন্তু কুসুম? দারিদ্রতা যে ঘরের ছাদ সেখানে চেতনার গভীরে মনকে লালন করা হলো বিলাসিতা। আর সেই বিলাসিতা করতে গিয়ে কুসুম একদিন মৃত্যু মেখে নৌকায় ভেসেছিলো। আর সেই নৌকার দাড় টানছিলো মতি মিয়া। ব্যক্তিগত অভিমতঃ ইরতাজুদ্দিন, শাহানা, কুসুম আর মতি মিয়া। এ চারটি নামকে পাঠকের চরিত্রের নাম মনে হতে পারে কিন্তু এই চারটি নাম শুধু চারটি চরিত্র না চারটি চেতনার নাম, চারটি দিগন্তের নাম। ইরতাজুদ্দিন আমাদের মাঝে লুকিয়ে থাকা আভিজাত্যের সত্ত্বা যে নিয়মের শৃঙ্গলে নিজেকে বন্দী রাখতে বলে। শাহানা সেই বিদ্রোহী সত্ত্বা যে এসে বার বার নিয়মকে ভেঙ্গে দিয়ে বলে বেঁচে থাকাই সব থেকে বড় নিয়ম। কুসুম আমাদের মাঝে ক্ষুধার্ত সেই সত্ত্বার প্রতিনিধি যার কাছে বেঁচে থাকা মানে ভালোবাসা, বেঁচে থাকা মানে শুধু ভালোবাসার মানুষের নিঃশ্বাসের শব্দ শোনা। আর মতি মিয়া হলো আমাদের ভেতরের মুক্তি। যার কোন পিছুটান নেই। হারাবার কিছু নেই। বাতাসের মত, বৃষ্টির মত, জ্যোৎস্নার আলোর মত সে স্বতন্ত্র, সে মুক্ত। পরিশেষে বলব হুমায়ূন আহমেদের বইগুলো মাঝে শ্রাবণ মেঘের দিন তাঁর রচনার মাঝে একটা দামী হীরক খন্ড। শুধু পড়লেই হয়তো এই হীরক খন্ডের আলোর স্পর্শ মিলবে না। প্রতিটি লাইনের মাঝে লেখক মঙ্গল আলোকের ছবি লুকিয়ে রেখেছেন। তাঁকে পরম মমতায় খুঁজতে হবে। আনন্দলোকে মঙ্গলালোকে বিরাজ সত্যসুন্দর ॥ মহিমা তব উদ্ভাসিত মহাগগনমাঝে, বিশ্বজগত মণিভূষণ বেষ্টিত চরণে ॥ গ্রহতারক চন্দ্রতপন ব্যাকুল দ্রুত বেগে করিছে পান, করিছে স্নান, অক্ষয় কিরণে ॥ ধরণী'পরে ঝরে নির্ঝর, মোহন মধু শোভা ফুলপল্লব-গীতবন্ধ-সুন্দর-বরনে ॥ বহে জীবন রজনীদিন চিরনূতনধারা, করুণা তব অবিশ্রাম জনমে মরণে ॥ স্নেহ প্রেম দয়া ভক্তি কোমল করে প্রাণ, কত সান্ত্বন করো বর্ষণ সন্তাপহরণে ॥ জগতে তব কী মহোৎসব, বন্দন করে বিশ্ব শ্রীসম্পদ ভূমাস্পদ নির্ভয়শরণে ॥
Fiction
0
বিভুতিভুষন বন্দোপাধ্যায় এর “আদর্শ হিন্দু-হোটেল” উপন্যাসটি অসাধারন একটি উপন্যাস হিসেবে বাংলা সাহিত্যে অমর হয়ে আছে।উপন্যাসটির মুল কাহিনী হল,ছেচল্লিশ বছরের এক প্রৌঢ় হাজারি ঠাকুর, যিনি তার রন্ধন বিদ্যাকে নিয়ে গেছিলেন শিল্পের পর্যায়ে। সময়ের প্রয়োজনে জীবনের চাহিদায় রানাঘাটের স্টেশনের নিকটে বেচু চক্রবর্তীর হোটলে মাত্র সাত টাকা মাহিনায় চাকুরী নেয় হাজারী ঠাকুর। শুরু থেকেই হোটেলে চাকরাণী কিন্তু মালিকের বিশেষ পাত্র পদ্মা ঝি হাজারি ঠাকুরের উপর হাজারি ঠাকুরের উপর মিথ্যে রোষের প্রবাহে তার জীবনে শ্রীহীন করে তোলে। হাজারি ঠাকুরের রান্নার গুনেই বেচু চক্রবর্তীর হোটলে সমগ্র রাণাঘাটে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। যে একবার হাজারি বামুনের রান্না খেয়েছে সে আর এই হোটেলে ফিরে না এসে পারেনি। আর হাজারি এই পেশাদার গুনটুকু পদ্মা ঝি কখনো মেনে নিতে পারেনি। বিষবাক্য তার মুখে সর্বদা হাজারির জন্য বরাদ্ধ থাকিত। হাজারি অপদস্থ করার কোন সুযোগ সে ছাড়ত না, এমনকি হোটেলে বাসন চুরি গেলে মালিককে প্রভাবিত করে তাকে জেলে পর্যন্ত পাঠাতে তার এতটুকু বিকেক দংশিত হয় না। কিন্তু হাজারি এমন একজন চরিত্র যে আধারের মাঝের মৃদু কিরণের রেখাকে সমগ্র অন্ধকারের নিকট তুচ্ছ করে দেখে। পদ্ম ঝিকে হাজারি কখনো ঘৃণা করেনি, তার প্রাপ্র সন্মান টুকু তাকে হাসিমুখে দিয়েছে আজীবন। আপাত দৃষ্টিতে পদ্মা ঝি এই উপন্যাসের খল চরিত্র হলেই তার কুট এবং ঈর্ষান্বিত ব্যবহার পরবর্তীতে হাজারির কর্ম জীবনের ক্ষেত্রে বিশেষ প্রভাব রেখেছিল। দীর্ঘসময় হোটেলে কাজ করার দরূন হাজারি একদিন স্বপ্ন দেখতে শুরু করে তার নিজের একখানা হোটেল হবে যেখানে সে সততা, নিষ্ঠা আর রন্ধনগুনে তার গ্রাহকের আগলে রাখবে। তার স্ত্রী কন্যা টেপির আজীবন অভাব কিন্তু অভিযোগহীন মুখে হাসির ছোয়া বুলিয়ে দেবে । মেয়েকে তার সাথে কাজ করে বংশীর ভাগ্নের সাথে বিয়ে দিয়ে ওদের হাসিমুখ দুটো দেখবে। হোটেল খুললে বেচু চক্রবর্তীর হোটেলের মত অসৎ উপায় অবলম্বন করবে না কখনো। কোন গ্রাহক কে অভুক্ত অবস্থায় ফিরে যেতে দেবে না। তার অর্থ দেবার সামর্থ্য থকুক আর নাই থাকুক। স্বপ্নগুলোকে ছুতে দেখতে বড় সাধ হয় হাজারির । আর হোটেলের নাম দিবে “হাজারি চক্রবর্তীর আদর্শ হিন্দু হোটেল”। কিন্তু হাজারি তো গরীব বামন। হোটেল খোলার এতো অর্থ সে কোথা থেকে পাবে? রানাঘাটের তার এক ধর্মের মেয়ে হাজারিকে নিজের পিতার মত ভক্তি করে তার শেষ অবলম্বন দুই শো টাকা দিতে আগ্রহ করে হোটেল খোলার জন্য ? হাজারি কি গরীবের এই টাকা নিতে পারবে? নিলে বাকী টাকাও বা কোথা থেকে আসবে?জানতে পড়ে ফেলুন এই বইটি।এই উপন্যাসটি সততা থেকে সামর্থ্য আর সামর্থ্য থেকে সাফল্যের গল্প। মানুষ যখন তার সততা, কর্মনিষ্ঠা, অধ্যাবসায় এবং অবশ্যই স্বপ্নকে নিয়ে এগিয়ে চলে তখন তার বিশ্বাস বাস্তবে রূপ নিয়ে সব সাধনার স্বীক্ররতি দেয়। বয়স মানুষকে বৃদ্ধ করে না কর্ম বিমুখতা, অবিশ্বাস আর স্বপ্নের শূন্যতা যেদিন জীবনে ভর করে সেদিন মানুষের জীবনে প্রকৃত অর্থে বার্ধক্য আসে।বইটি পড়ে আমার অসাধারন লাগছে।আশাকরি যারা বইটি পড়বেন তাদের কাছে অবশ্যই ভাল লাগবে।
Fiction
0
একুয়া রেজিয়ার প্রথম সম্পূর্ণ উপন্যাস "কিছু বিষাদ হোক পাখি"। কিছু বিষাদ হোক পাখি -আমাদের প্রাত্যহিক জীবনের টানাপড়েন ও হাসি আনন্দ দিয়ে লেখা কিছু কথামালা। একুয়া রেজিয়ার অন্য সব গল্পের মতই এই উপন্যাসটিতেও তিনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পাঠকের আগ্রহ ধরে রাখতে পেরেছেন। বইটি পড়ার সময় পরবর্তী কাহিনী জানার একটা ব্যাকুলতা কাজ করে, যেটা কাহিনীর শেষে এসে রূপান্তরিত হয় এক আকাশ বিষাদে। মনের মাঝে কেমন যেন করে বইটি পড়ার পর। কিছু কথা, কিছু কাহিনী যেন আমার জীবনকে নিয়েই লেখা। আমার অস্তিত্ব খুঁজে পাই আমি এই উপন্যাসের অলিতে গলিতে। লেখক হিসেবে একুয়া রেজিয়ার সার্থকতা তার পাঠকের মানসিকতায় এক গাড় বিষাদের ছায়া এঁকে দেয়াতে। নিশ্চিত ভাবে বলতে পারি, এই বইটি যে কোন পাঠককে অনেকক্ষণ ভাবাবে, নাড়া দেবে গভীর ভাবে। "কিছু বিষাদ হোক পাখি" উপন্যাসের ও লেখক হিসেবে একুয়া রেজিয়ার সর্বাঙ্গীণ সাফল্য ও উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি কামনা করছি।
Fiction
0
" লিটু বৃত্তান্ত - মুহম্মদ জাফর ইকবাল " "লিটু বৃত্তান্ত" গল্পটা লিটু নামের কোন এক কিশোর যুবকের একার গল্প নয়। গল্পটা আমাদের, সকলের। এই গল্প কিশোর বয়সে দুরন্তপনার গল্প, দেশকে ভালোবাসার গল্প, মজার ছলে-গল্পের ঢং এ বিজ্ঞানকে জানার গল্প, মুক্তিযুদ্ধ এবং মুক্তিযোদ্ধাকে জানার গল্প, সকলকে নিয়ে ইহা একা জমজমাট অ্যাডভেঞ্চার। মুহম্মদ জাফর ইকবাল দেশজ ঢং এ কিশোর উপন্যাসকে অন্য এক মাত্রা দিয়েছেন। সবেমাত্র দুরন্তপনা জেঁকে বসেছে মনে। এমন সব দুরন্তপনা মনকে আরেকটু রং ছিটিয়ে মনের তৃষ্ণা টা যেন বাড়িয়ে দিয়েছেন। আর সেই সব তৃষ্ণা থেকে বালক বয়সে জানার আগ্রহ, দেশপ্রেম এবং শিক্ষাটাকে আয়ত্ত করার আগ্রহ জন্ম দিতে থাকেন স্যার। এক একেকটা বই যেন জ্ঞানের সমুদ্র, মনের পথ্য। খাবার টেবিলে পারিবারিক সুস্পর্শ দিয়ে গল্পের শুরু করে গল্পের ইতি টানে অদ্ভুত এক বন্ধুত্বের গল্প দিয়ে। যে গল্প শুরু হওয়ার কিন্তু শেষ হবার নয়। লিটু নামের এক কিশোর, শহুরে পরিবেশ ছেড়ে নতুন পরিবেশ হাওড়ে বাস গাড়ার গল্প। বাবার বদলি মানে বন্ধুবান্ধব, নিজস্ব পরিচিত যায়গা, পরিচিত মানুষজন ছেড়ে নতুন এক জগৎে প্রবেশ। কেমন সেই নতুন? কেমন হবে নতুন যায়গা, নতুন মানুষজন, নতুন স্কুল, নতুন বন্ধুবান্ধব। কেমন হল সেই সব নতুন তার গল্পে বর্ণিত উপন্যাস লিটু বৃত্তান্ত। কেমন সেই সব নতুনের গল্প, জানতে হলে বইটি পড়তে হবে। চারপাশে কত মানুষ। সবাইকে মনে থাকে না। তবুও কিছু মানুষ মনে জেঁকে বসে। এই যাদের মনে থাকে তাদের সবার কথা বলেও শেষ করা যায় না। তাদের কথা বলতে থাকলে মনে হয় জীবনে বেঁচে থাকাটা সত্যিই মজার। বই: লিটু বৃত্তান্ত। লেখক: মুহম্মদ জাফর ইকবাল। প্রকাশনী: অনন্যা প্রকাশনী। মূল্য: একশো পঞ্চাশ।
Childrens-Book
2
লেখক আয়মান সাদিক কে বর্তমান বাংলাদেশে সবাই চিনেন। তার 10 minute school অনেক পরিচিতি লাভ করে এবং সেখানকার অনেক স্টুডেন্ট তার পোস্ট করা বিভিন্ন ভিডিও র মাধ্যমে অনেক কিছু শিখছে। এছাড়াও বিভিন্ন বড় বড় প্রতিষ্ঠানে তাকে ইদানিং বক্তব্য দিতে দেখা যায়। তার সেই 10 minute School এর ই প্রকাশ হলো never stop learning বইটি। আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় অনেক অগ্রগতি হয়েছে কিন্তু এখনও তা পুরোপুরি যুগোপযোগী এবং বাস্তবসম্মত হয়ে ওঠেনি। শিক্ষা এবং শিক্ষার্থীদের লক্ষ্য এখনও ভিন্ন অবস্থানে রয়েছে। শিক্ষার্থীদের মুল লক্ষ্য এখন শুধু ভালো ফলাফল করা। কিন্তু আসল উদ্দেশ্য সুস্থ দক্ষ ও সুন্দর মানসিকতা সম্পন্ন আলোকিত নাগরিক তৈরী করা। কিন্তু যে শিক্ষা তে কোন মজা নেই সে শিক্ষা কে এখন শিক্ষার্থী রা বোঝা মনে করে সামনের দিকে আগানোর জন্য সেগুলো ফলপ্রসু হচ্ছেনা। বই মুলত দুই ধরনের হয়ে থাকে। গল্পের বই এবং পাঠ্য বই। পাঠ্য বইয়ের বাইরে আমরা বিনোদনের জন্য গল্পের বই পড়ে থাকি। সব ধরনের বই থেকেই আমরা কোন না কোন শিক্ষা পেয়ে থাকি। বই পড়ে আমাদের কল্পনাশক্তি, সৃজনশীলতার বিকাশ ঘটে থাকে। কিন্তু হাজারো ফিকশনের ভীড়ে আমরা আজকাল অন্য কোন বিষয় নিয়ে লিখতে ভুলতে বসেছি প্রায়। গল্প ছাড়াও আরো অনেক বিষয় বস্তু যে আমাদের চারপাশে আছে সেগুলো চোখেই পড়েনা। আচ্ছা আমরা যদি এই গল্পগুলো বাদে এরকম কোন একটা বই পড়তাম যেটা পড়ে আমাদের জীবনটাই আমরা পাল্টে ফেললাম। এরকম হলে কেমন হতো?? আমরা জানি আমরা যা দেখি বা পড়ি তার অনেক কিছুই আমাদের বাস্তব জীবনে প্রতিফলন ঘটিয়ে থাকে। তাই বই পড়ে যদি হতাশা থেকে মুক্তি পাওয়া যেত বা নিজের শেখার আগ্রহ গুলো সম্পর্কে আইডিয়া পাওয়া যেতো হয়তো জীবনে আমরা কতোটুকু পরিবর্তন আনতে পারতাম?? পৃথিবী তে বিভিন্ন মানুষের মধ্যে একটা সমস্যা বিদ্যমান। আর সেটা হলো অন্য মানুষ কী করে, তারা কেমন সুখে আছে এগুলো নিয়েই তারা হা হতাশ করতে থাকে। কিন্তু তারা এটা চিন্তা করেনা সেই সময়ে তারা নতুন কোন কিছু চিন্তা করে সেটা ফলাতে পারে। আমরা সাধারনত দুই ধরনের মানুষ দেখি। এক ধরন যারা সবসময় এটা চিন্তা করে, পড়াশোনা না করলে পরীক্ষা ভালো হবেনা,রেজাল্ট খারাপ হবে চাকরি হবেনা তখন কিছুই হবেনা। অন্যদিকে আরেকজন পরীক্ষা কে শুধু পরীক্ষা হিসেবেই নেয় অর্থ্যাৎ সুযোগ হিসেবে। তাদের কাছে একেকটা পরীক্ষা মানে একেকটা সুযোগ যেকানে একটা মিস হয়ে গেলেও পরবর্তী টার জন্য তারা আবার লেগে পড়ে। আর দিনশেষে দেখা যায় বিজয়ীদের খাতায় ২য় মানুষ গুলোই বেশী নাম লিখিয়েছে। জীবনে সবকিছুর শুরু হয় ভিত্তি গড়া থেকে। তুমি বার বার চেষ্টা করে ব্যার্থ হচ্ছো এটা নিয়ে মন খারাপ করোনা। কারন তুমি ব্যার্থ হলেও বিষয়বস্তু নিয়ে তোমার পরিস্কার ধারনা গুলো বাড়ছে তাই লেগেই থাকো। আবার আমরা দেখি যেটা আমাদের কে কেউ করতে বারন করে আমরা সেই জিনিসটাই বেশী করে থাকি। কারন কেউ আমাদের সত্যিকার অর্থে কিছু নিষেধ করে গেলেও আমরা নিজেদের মস্তিষ্কে ঐ বারন করা জিনিস টাই সেট করে নেই আর সেটাই করতে থাকি। তাই সবকিছু কঠিন করে না নিয়ে সহজভাবে চিন্তা করলে তার সমাধান ও সহজ হবে। আর এজন্য আমাদের মানসিক অশান্তি কে দুর করতে হবে। তাই যতো বেশী মন খারাপ হবে ততো বেশী সেই উদ্যম নিয়ে ঝাপিয়ে পড়তে হবে নতুন কাজের জন্য। সাফল্য আসবেই।। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ আত্নউন্নয়নমলক বই পড়ার সময় সবারই মনে হয় যে এখন থেকে সবকিছু ঠিকভাবে করবো কিন্তু বই পড়া শেষ করেই এই আগ্রহ টা চলে যায়। আমারও তাই হয়েছিলো। বইটির বিভিন্ন আইডিয়া,গল্প, বিভিন্ন বড় ব্যাক্তিদের উদাহরন আপনাকে শেষ পর্যন্ত ধরে রাখবে পড়ার জন্য।তাই বারবার পড়া উচিত এই বইগুলো যেন উদ্যম শেষ না হয়ে যায়।। বইটি অনেক সহজ ভাষা তে লেখা যেটা পড়তে কারো বিরক্তি লাগবেনা আশা করি আর নিজের জীবনে তা প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টায় থাকতে হবে। বইটির একটি উক্তি অনেক ভালো লেগেছে .. "Great minds talk about ideas, average minds talk about events, small minds talk about people... "
Motivational
6
"নাট বল্টু"এই দুই ক্ষুদে বিজ্ঞানী আর দার্শনিককে নিয়ে নানা মজাদার বিস্ময়কর ঘটনায় সাজানো মজার উপন্যাস ‘নান্টুবল্টু’ বল্টু খুবি মেধাবী।কিভাবে কিভাবে জানি বইয়ের দিকে তাকিয়ে তাকিয়ে গল্পটা শুনতে শুনতে বল্টু পড়া শিখে গেল, সে কোনো অক্ষর চেনে না কিন্তু পড়তে পারে। কি অদ্ভুত। এর থেকে বিচিত্র ব্যাপার আর কী হতে পারে?আর সেই সাথে রয়েছে নানটূ । বল্টুর সব সময়ের সঙ্গী নান্টু কখনো রাগে না। তার ভেতর রাগ ক্রোধ-হিংসা এসব কিছু নেই। মহামানব দার্শনিক ধরনের। কিন্তু বয়স তার ছয়। ছয় বছরের এই ছোটখাটো মানুষটা পুরোপুরি একজন দার্শনিক। যদি ছোট বাচ্ছাদের দাড়ি উপায় থাকত, তাহলে দেখা যেত কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতো নান্টুর লম্বা লম্বা পাকা দাড়ি। নান্টুর পাকা দাড়ি নেই সত্যি, কিন্তু তার কথাবার্তা-ভাবভঙ্গি কবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর থেকে কোনো অংশে কম নয়। এদিকে ১০ বছর বয়সের বল্টু এই বয়সেই থিওরি অফ রিলটিভিটি শিখে ফেলে।আর যখনি কোন বিজ্ঞান বিষয়ক প্রশ্নের উত্তর খুজে পায় না,তখনি সেটি উদ্ভাবন করতে আবিষ্কার করতে শুরু করে। এভাবে একদিন দেখা হয় পাশের বাড়ির নান্টুর সাথে।এবং আস্তে আস্তে তারা বন্ধু হয়ে যায়। আর ঘটায় আজব সব এক্সপেরিমেন্টবল্টু । এক ক্ষুদে বৈজ্ঞানিকের নাম বল্টু।। তার গবেষণার বিষয়বস্তু আশেপাশের সবকিছু । সে প্রশ্ন করতে ভালবাসে । সবকিছু নিয়ে ।তার প্রশ্নের অভাব নেই।জানার আগ্রহের শেষ নেই। আর ভালোবাসে গল্প। সে তার আম্মুর কাছ থেকে গল্প শুনতে ভালবাসে । বল্টুর আম্মু তাকে গল্পের বই থেকে গল্প পড়ে শুনাতে শুনাতে এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে গেল । বল্টু কেমন করে কেমন করে জানি অক্ষর না চিনেই পড়তে শিখে গেল এবং ভারি ভারি বই পড়ে শেষ করে ফেলল । আর সাথে তার বিচিত্র আর মজার সব গবেষণা তো আছেই । আর নান্টু হল বল্টুর সহযোগী । বল্টু যেমন মহান ক্ষুদে বৈজ্ঞানিক তেমনি নান্টু হল মহান ক্ষুদে দার্শনিক । ছোট্ট এই ছেলেটির চাল-চলন,কথা- বার্তা সবকিছুতেই একটা দার্শনিক ভাব। বল্টু নানারকম এক্সেপেরিমেন্ট করে আর তার সহকারী হিসেবে থাকে নান্টু । নান্টু আবার কিছু বুঝতে না পারলে অনেক প্রশ্নও করে বল্টুকে । বল্টু তখন তাকে সেটা বুঝিয়ে দেয় ! তাদের এক্সপেরিমেন্টগুলো খুব মজার-মশা কেন ভূত হবে না,দেশে এত লোকের কাপড়ের অভাব অথচ মেয়েদের কেন এত লম্বা শাড়ি পড়তে হবে। টিউব থেকে পেস্ট বের করার পর তা আবার ঢুকিয়ে ফেলতে চেষ্টা,ফ্যানের রিঙের সাথে শাড়ি পেঁচিয়ে তা দিয়ে ঝুলে থেকে অ্যাস্ট্রোনাট হবার চেষ্টা করে । এম্বনকি ল্টু নান্টুর বড় আপু মুনিয়াকে দিয়ে আইনস্টাইনের থিওরি অফ রিলিটিভিটি সংক্রান্ত একটা গবেষণাও করে ফেলে ! নান্টুর আমেরিকা থেকে আসা "সায়েন্টিস্ট" সবুজ ভাইয়াকেও বল্টু পুরাই বোকা বানিয়ে দেয় । শেষে ছোটখাট একটা অ্যাডভেঞ্চার দিয়ে শেষ হয়েছে মজার এ বাচ্চাদের উপন্যাসটি ।
Childrens-Book
2
সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতাব্দী জুড়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি ছিল ব্রিটেন ও এশিয়ার বৃহত্তম এবং সবথেকে ক্ষমতাশালী ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান। কোম্পানির প্রতিষ্ঠা হয় ব্রিটেনের বাজারের জন্য এশিয়ার পণ্য কিনবার উদ্দেশ্য নিয়ে। এই কেনাবেচার পরিণাম পারস্য থেকে ইন্দোনেশিয়া, এশিয়া থেকে উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত বিস্তৃত এক নেটওয়ার্ক। অষ্টাদশ শতাব্দীর দ্বিতীয় ভাগে প্রায় নাটকীয়ভাবে কোম্পানি ভারতে সাম্রাজ্য প্রতিষ্ঠা করে ফেলল। ব্যবসা থেকে সাম্রাজ্যবাদ ও ভারতে কোম্পানির বাণিজ্যের ফলে অর্থনীতির পরিবর্তন- মূলত এই দু’টি বিষয় আলোচিত হয়েছে। প্রাচীনকাল থেকেই ভারতবর্ষের সঙ্গে ইউরোপের বাণিজ্য হত মূলত স্থলপথে। ১৪৯৮ সালে ভাস্কো-ডা-গামার নেতৃত্বে পর্তুগিজ়রা ইউরোপ থেকে ভারতে আসার সোজা সমুদ্রপথ আবিষ্কার করার পর জলপথেও বাণিজ্য শুরু হয়ে যায়। ভারত/এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্যে পর্তুগিজ়দের মুনাফার পরিমাণ (অনেকসময় শতকরা এক হাজারেরও বেশি) দেখে উত্তর ইউরোপের ব্যবসায়ীরা লোভ সামলাতে পারলেন না। ভারত/এশিয়ার সঙ্গে বাণিজ্য করার জন্য তাঁরা জয়েন্ট স্টক কোম্পানি প্রতিষ্ঠা করলেন। এভাবেই জন্ম হল ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি (১৬০০) আর ডাচ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি (১৬০২)-র। তার অনেক পরে ফরাসি, ড্যানিশ প্রভৃতি কোম্পানির উদ্ভব। ষোড়শ শতকে ভারত মহাসাগরের বাণিজ্যে পর্তুগিজ়দের ছিল একচ্ছত্র আধিপত্য। কিন্তু সতেরো শতকে ডাচ আর ইংরেজরা এসে পর্তুগিজ়দের হটিয়ে দিয়ে নিজেরাই সর্বেসর্বা হয়ে ওঠে। আলোচ্য গ্রন্থে তীর্থংকর দুটো ‘বড় প্রশ্ন’-র উত্তর খুঁজেছেন। প্রথম, ব্যবসা থেকে সাম্রাজ্যবাদ (মানদণ্ড থেকে রাজদণ্ড)- কোম্পানির এই বিবর্তনের কারণগুলি কী? দ্বিতীয়ত, ভারতে কোম্পানির বাণিজ্যের ফলে অর্থনীতির কী পরিবর্তন হয়েছিল? ‘ভূমিকা’ ও ‘মূল্যায়ন’ বাদ দিয়ে সাতটি সুচিন্তিত ও সুবিন্যস্ত অধ্যায়ে লেখক তাঁর বক্তব্য ও মূল সিদ্ধান্ত পেশ করেছেন।
Political
3
দেবী বই এইটা
Fiction
0
সব সময়ই বলা হয় "শেষের কবিতা" বাংলা সাহিত্যের সবচেয়ে রোমান্টিক উপন্যাস । কিন্তু আমার কাছে মনে হইছে এই বইটি সেই মর্যাদা পাওয়ার যোগ্য । আমি "শেষের কবিতা উপন্যাসের চেয়ে এই বইটিতে বেশি ভোট দিব । আমার কাছে বইটির কাহিঈ অসাধারন লাগছে । এই রকম বই শুধু হুমায়ুন আজাদই লেখতে পারে আর কেউ না ... R.I.P
Fiction
0
১৯১৭ সালের অক্টোবর বিপ্লব রাশিয়ায় যে মার্ক্সীয় সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিষ্ঠা করে, তা গত শতাব্দীর ত্রিশের দশকে পুঁজিবাদী মহামন্দার প্রতিতুলনায় ছিল বিশ্বের বিস্ময়। চল্লিশের দশকে নাৎসি সমরশক্তির সঙ্গে মহাযুদ্ধে বিজয়ী শক্তিসমূহের অগ্রণী। পঞ্চাশ ও ষাটের দশকে মানবপ্রজাতির এক-তৃতীয়াংশের মধ্যে প্রসারিত এবং অক্ষুণ² প্রবৃদ্ধির ধারক এই ব্যবস্থা তৃতীয় বিশ্বের বহু মানুষের দৃষ্টিতে মনে হয়েছিল মানবসমাজের ভবিষ্যৎ। অথচ সত্তরের দশক থেকে ব্যবস্থাটির প্রবৃদ্ধি শ্লথ হতে থাকে এবং অত্যল্প কালের মধ্যে, গত শতাব্দীর শেষ দশকের প্রারম্ভে, বিশ্বব্যাপী ব্যবস্থাটি বিলুপ্ত হয়। ব্যবস্থাটির পতন হলেও এর ঐতিহাসিক উদ্ভব এবং নাটকীয় পরাভব সম্বন্ধে প্রশ্নের নিরসন হয়নি। লেনিন ও তাঁর অনুসারীরা যে ব্যবস্থা প্রবর্তন করেছিলেন, তার সঙ্গে মার্ক্সের তত্ত্ব ও মতাদর্শের কতটা সামঞ্জস্য ছিল? বাস্তবে বিদ্যমান সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থাটি বাইরের আক্রমণে নয়, অন্তঃস্থিত অসংগতির কারণে বিলুপ্ত হয়েছে। এই অসংগতির চরিত্র ও ব্যাখ্যা কী? মার্ক্সীয় সমাজতন্ত্র গঠনের কোনো বিকল্প নকশার অস্তিত্ব ছিল কি? যাঁরা সমতা, প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক পরিবর্তনের লক্ষ্যে সমাজতন্ত্রের অনুসারী হয়েছিলেন, তাঁদের সামনে বিকল্প কী? পুঁজিবাদকে অবশ্যম্ভাবী বলে গ্রহণ করা? নাকি সমতার লক্ষ্যে বিকল্প সমাজতন্ত্রের সন্ধান? গ্রন্থটিতে এই প্রশ্নগুলোর উত্তর অনুসন্ধান করা হয়েছে।
Political
3
আমরা হিমুকে খুব ভাল করে চিনি, জানি হিমু কেমন,তার চাল চলন কেমন আর সবচেয়ে বড় কথা আমরা জানি হিমু বিয়ে করেছে কিনা। কিন্তু আমরা কি এটা জানি মিসির আলী বিয়ে করেছেন কিনা? যদি বিয়ে করে থাকেন তাহলে কাকে বিয়ে করেছেন সে কেমন এসব প্রশ্নের উওর বইটি পড়লে জানতে যেমন পারবেন সেইসঙ্গে জানতে পারবেন তিন্নি নামের একটি ছোট্ট সুন্দরী মেয়ের কথা। মেয়েটির অদ্ভুত এক রোগ আছে। তবে ব্যাক্তিগত ভাবে আমি সেটাকে রোগ বলবোনা বরং তিন্নির সেই রোগ যদি আমার হতো তাহলে সেটা হত আমার জীবনে অনেক বড় পাওয়া। অনেক ধনী পরিবারের মেয়ে তিন্নি, জন্মের পরপরই মা মারা যায়। জন্মের পর থেকে তিন্নি কথা বলতো না। এমনাটা নয় যে তিন্নি কালা কিংবা বোবা। সব ঠিক থাকার পরও তিন্নি কেন কথা বলে না এটা জানেন না তার বাবা। তবে ব্যাপারটায় যখন তিনি অভস্ত হতে লাগলেন ঠিক তখন থেকে তিন্নি কথা বলতে শুরু করলো। সেইসঙ্গে পৃথিবীর সব প্রশ্নের উওর তিন্নি জানে। অন্ধকারে স্পষ্ট দেখতে পায় তিন্নি। অনায়াসে অন্যের মাথার ভেতর ঢুকে মনের কথা যেমন বের করে আনতে পারে তেমনি অন্যের মাথায় যন্ত্রণা সৃষ্টি করতে পারে। এর কম আরো অনেক ক্ষমতা আছে তিন্নির। হয়তো সেইসব ক্ষমতার কারনে তিন্নি চায় বর্তমান সমস্যা থেকে মুক্তি পেতে। নয়তো একদিন সে গাছে রুপান্তরিত হবে। গাছরাই তিন্নিকে সেকথা বলছে, তিন্নি গাছের কথাও বুঝতে পারে। তিন্নির এতসব সমস্যা কি মেটাতে পারবে মিসির আলী? কিন্তু মিসির আলীকে এই সমস্যার সমাধান যে করতেই হবে। একটা বাচ্চা মেয়ের কষ্ট তিনি সহ্য করতে পারছেন না। তাই শুরু করে দিলেন পড়াশোনা, যোগাযোগ করতে লাগলেন পৃথিবীর বিখ্যাত সব মানুষদের সাথে।
Fiction
0
পাপ জিনিসটা অদ্ভুত। ভুলে থাকতে চাওয়া কিংবা চেপে রাখতে চাওয়া পাপ কখনো যদি বেরিয়ে যায় কিংবা বেরিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা দেখা দেয়, তখন তা যেকোন মূল্যে চেপে রাখার জন্য মানুষ মরিয়া হয়ে ওঠে। বিষয়টাকে অনেকটা অস্তিত্ববাদ চেতনার সাথে সম্পৃক্ত বলা যায়! মাহতাব উদ্দিন বদমেজাজি প্রকৃতির মানুষ। তবে শুধুমাত্র নিজের একমাত্র মেয়ের ক্ষেত্রে তিনি সর্বদা নমনীয়তা বজায় রাখেন। বর্তমানে খলিলুল্লাহ নামক জনৈক এক ব্যক্তির উপর তিনি চরম লেভেলের বিরক্ত। কিন্তু মেয়েকে দেওয়া কথা "আগামী এক সপ্তাহ কারো সাথে রাগ করবেন না" রাখতে গিয়ে তিনি তার বিরক্তি কোনোভাবেই প্রকাশ করতে পারছেন না। খলিলুল্লাহ গ্রাম থেকে আসা এক যুবক। মাহতাব সাহেবের কাছে তার আসার কারন সে নিজেও জানে না। নীলগঞ্জ স্কুলের হেডমাস্টার হাবিবুর রহমানের পরামর্শে সে মাহতাব সাহেবের কাছে এসেছে। তার অদ্ভুত কিছু ক্ষমতা রয়েছে। সে যত সময় ইচ্ছা পানির নিচে থাকতে পারে। যেকোন যন্ত্র সে অনায়াসেই 'ফইড়' করতে পারে। টুনটুনি মাহতাব সাহেবের একমাত্র কন্যা। একজন পিতার আদর্শ কন্যার যে যে গুন দরকার সবই তার মধ্যে রয়েছে। যদিও তার বন্ধুর সংখ্যা একেবারে নাই বললেই চলে। বর্তমানে সে খলিলুল্লাহ নামক এক ব্যক্তিকে নিয়ে ব্যস্ত। খলিলুল্লাহ নামটা তার পছন্দ হয়নি বিধায় সে লোকটির নতুন নাম রেখেছে অরণ্য। জালাল খাঁ মাহতাব উদ্দিনের বন্ধু। ভীষন বইপড়ুয়া এই ব্যক্তি বই পড়ার বাইরে একটু সময়ও নষ্ট করতে রাজি নন। অথচ সেই ব্যক্তি বর্তমানে ব্যস্ত হয়ে আছেন খলিলুল্লাহ নামক এক ব্যক্তিকে নিয়ে। খলিলুল্লাহ ওরফে অরণ্য নামের ব-কলম এই ব্যক্তিকে নিয়ে ব্যস্ত হয়ে পড়ার কারন অবশ্য সে যেকোন যন্ত্রের ফইড়ের পাশাপাশি নতুন যন্ত্র তৈরীও করতে পারে। সে বর্তমানে 'Past Recorder' নামের একটা যন্ত্র বানাচ্ছে যাতে তিনি সহযোগিতা করছেন। কে এই খলিলুল্লাহ? সে কি রোবট? নাকি Homo Superior? নাকি জ্বিন? তার বুড়ো আঙুলের রহস্যইবা কি? আচ্ছা, 'ফইড়' কি? খলিলুল্লাহকে নিয়ে মাহতাব উদ্দিন সাহেবের এত চিন্তার কারন কি? কেনইবা তিনি খলিলুল্লাহকে বন্দি করে রাখছেন? কেন তিনি টুনটুনিকে খলিলুল্লাহর কাছে যেতে দিচ্ছেন না? তিনি কাকে ভয় পাচ্ছেন? খলিলুল্লাহকে? নাকি তার তৈরীকৃত যন্ত্রকে? খলিলুল্লাহকে যে ঘরে বন্দি করে রাখা হয়েছে ঐ ঘরে কি আগেও কাউকে বন্দি করে রাখা হয়েছিলো? শেষের দিকে পানি দ্বারা মৃত্যু দিয়ে তিনি কিসের ইঙ্গিত দিলেন? মাহতাব সাহেব কি তবে..? আচ্ছা, খলিলুল্লাহ কি তবে দ্বিতীয় মানব?? মাহতাব সাহেবের অজ্ঞাতসারে কি নতুন কোনো দ্বিতীয় মানবের জন্ম হচ্ছে? এতসব প্রশ্নের উত্তর জানতে হলে পড়তে হবে "দ্বিতীয় মানব" বইটি। দ্বিতীয় মানব কি ধরনের বই সে বিষয়ে আমার যথেষ্ট ধোঁয়াশা রয়েছে। এটি কি সাইকোলোজিক্যাল নাকি অতিপ্রাকৃত? নাকি সায়েন্স ফিকশন? আসলে আমি এই বইয়ের ধরন বের করতে ব্যর্থ! তবে.. ভালো লেগেছে বইটি। বিশেষ করে জালালা খাঁ'র চরিত্রটি। যেন একেকজন বইপড়ুয়ার আকাঙ্ক্ষিত ভবিষ্যত প্রতিচ্ছবি!
Science-Fiction
4
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মার্চ আওলাদ মিয়ার ভাতের হোটেল আওলাদ মিয়ার হাতের হোটেল লেখক নিয়াজ মেহেদীর প্রথম বই। আওলাদ মিয়া প্রত্যেক বছরেই নির্দিষ্ট এক দিনে ৬জন মানুষকে নিয়ে গল্পের আসর বসান। তার কেবলমাত্র একটিই আবদার, প্রত্যেককে তাদের জীবনের অদ্ভুত একটি গল্প বলতে হবে৷ বইটিকে আসলে একটি ছোট গল্প সংকলন বলা চলে। তবে লেখক নিজের মুন্সিয়ানায় গল্পগুলিকে ভিন্ন ঢঙে উপস্থাপন করেছেন। অর্থাৎ গল্পের ভেতরে আরেকটি গল্প! গল্পগুলো অদ্ভুত, নাড়া দিয়ে যাওয়ার মত। বেশিরভাগ গল্পই প্যারানরমাল জাতীয়। ফ্লাপের লেখা অনুযায়ী, বইয়ের গল্পগুলো মানুষ হিসেবে আমাদের অস্তিত্বকে নাড়া দিবে। তবে সত্যি বলতে বই শেষ করার পরেও এমন কিছু অনুভব করি নি। নুরুন নাহার এবং সুধাংশুর গল্পটি বেশ ভালো ছিল। এরপর আসে ছামেদুলের গল্প। ছামেদুলের গল্প পুরোটাই রংপুরের স্থানীয় ভাষা লেখা! আমিও যেহেতু ঐ অঞ্চলের, তাই এই গল্পের প্রতি ভালো লাগা আমার কাছে অন্যরকম। তবে অন্যান্য অঞ্চলের পাঠকদের আঞ্চলিক ভাষার ব্যবহারের কারণে বুঝতে সমস্যা দেখা দিতে পারে। আলাউদ্দিন মন্ডল এবং অরিন্দমের গল্পটি বাকিগুলোর তুলনায় অনেক ভালো ছিল। তবে সাজ্জাদুল ইসলামের গল্পটি ছিল বইয়ের সবচেয়ে দুর্বল গল্প। সবশেষে আওলাদ মিয়া তার নিজের গল্পটি বলে। গল্পের প্লট যেহেতু আওলাদ মিয়ার উপর ভিত্তি করেই, তাই শেষ গল্পটি আরো স্ট্রং হওয়া উচিত ছিলো! লেখকের লেখনী বেশ সাবলীল। তবে আরো অনেক উন্নতি করার জায়গা রয়েছে। লেখকের যেহেতু এটি প্রথম বই, তাই দোষ-ক্রুটি কিছুটা মেনে নেওয়া যায়। বইয়ের বাইন্ডিং, পেজ কোয়ালিটি স্ট্যান্ডার্ড ছিল। বানান ভুল খুব একটা চোখে পড়ে নি। বাতিঘর থেকে প্রকাশিত ৯৩ পৃষ্ঠার বইয়ের মুদ্রিত মূল্য ১৪০টাকা। আগ্রহীরা পড়ে দেখতে পারেন।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ তুমি আমায় ডেকেছিলে ছুটির নিমন্ত্রণে লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃ কাকলী প্রকাশনী প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ ধরণঃ সমকালীন উপন্যাস মূল্যঃ ১২০ টাকা (রকমারি ৯০ টাকা) . সন্ধ্যা হয় হয় এমন সময় সবুজ রঙের একটা শাড়ি পড়ে নবনী হাটছে। বেশ অনেকটা জায়গা সে হেটে চলে এসেছে। তারপর সে দাঁড়ায় একটা বটগাছের সামনে। বাহ! চমৎকার বটগাছ! মনের খুশিতে বেশ ক'বার চিৎকারও দিল সে! হঠাৎ মনে হল তার, গাছটা "দোষী" নয়তো? গ্রামে প্রায় অনেক গাছই "দোষী" উপাধি নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকে! হঠাৎ ভয় লাগতে শুরু করে নবনীর! গাছটার আড়াল থেকে নিঃশ্বাস ফেলার শব্দ হলনা??কে ওখানে??? কে???......... . মন্ত্রী জামিল সাহেব নিজ পরিবার নিয়ে বেড়াতে এসেছেন ডাকবাংলোয়। দুই মেয়ে নবনী এবং শ্রাবণী। স্ত্রী জাহানারা আর কাজের মহিলা মিলুকে নিয়ে জামিল সাহেবের পরিবার। এই কাজের মহিলা মিলু পরিবারের অংশ বলার কারণ, গত কুড়ি বছর ধরে সে জামিল সাহেবদের সঙ্গে আছে। কিন্তু এই কাজের বুয়াকে নিয়ে মনে মনে এত খুঁতখুঁতানি কেন জাহানারার মনে? হয়তো কোন রহস্য আছে....... . নবনী বাংলোয় ফিরেই দেখে বাংলো ভর্তি মানুষ তার বাবার পাশে। সুরুজ মিয়া নামক এক ব্যক্তি "রাজ_চিতল" নামক এক বিশাল মাছ ধরে এনেছেন! এত বড় মাছ হয়!!!! অবাক নবনী..... কিছুক্ষণের মধ্যেই নবনী জানতে পারে শাহেদ এসেছে। শাহেদের সাথে বিয়ে ঠিক নবনীর। শাহেদ-নবনীর পরিচয় পর্বটা বেশ অদ্ভুত। দশ হাজার টাকা খরচ করে শাহেদ নবনীর সাথে পরিচয় করার জন্য একটা ছবি কিনেন.... ছবি কেন্দ্র করেই তাদের পরিচয়! যাইহোক, নবনীকে সারপ্রাইজ দেয়ার জন্যই হঠাৎ বাংলোতে এসে হাজির হয় শাহেদ। মনে মনে খুশি হলেও বাইরে সেটা প্রকাশ করেনা নবনী। এই এক দোষ তার, কোন ব্যাপারই কোন অনুভূতিই পারেনা নবনী ঠিক মতো প্রকাশ করতে। বেশ সহজ-সরল। কোন ব্যাপার চট করে বুঝতে পারেনা সে। . শ্রাবণী, নবনীর বোন। বেশ অদ্ভুত ধরণের এক মেয়ে। মাথায় প্রচুর বুদ্ধি। বোনের কাছ থেকে অদ্ভুত কিছু কথা জানতে পারে নবনী! শুনে মনটা কেমন যেন হয়ে যায়। ভাল লাগেনা কথা গুলা মেনে নিতে। কিন্তু শ্রাবণী এক আজব মেয়ে! যা বলে, ফলে যায়..... কি এমন কিছু ব্যাপার দেখতে পায় শ্রাবণীর মাঝে যে মনে মনে কেমন এক অস্বস্তিতে পড়ে যায় নবনী ? হঠাৎ একদিন নবনী জানতে পারে তার মায়ের এক দুঃখের কথা! কি এমন ব্যাপার, যে জাহানারা এতদিন লুকিয়ে রেখেছিলেন? চমকে যায় নবনী শুনে সেই কথা! মনটা বড় খারাপ হয়ে নবনীর! . এমন কেন পুরুষ মানুষরা???শাহেদ কি আদৌ ভালবাসে তাকে? নাকি শাহেদকে বিয়ে করে মায়ের জীবনের মতই একটা জীবন কাঁটাতে হবে নবনীকে?কেজানে... কি আছে নবনীর ভাগ্যে? . নবনী কাঁদছে। পাশে বটবৃক্ষের মত বোনকে জড়িয়ে আছে শ্রাবণী....... . #পাঠপ্রতিক্রিয়াঃ হুমায়ূন আহমেদের এই বইটি আমার অনেক আগের পড়া, তখন পড়ি ক্লাস নাইনে। অসাধারণ লেগেছিল বইটি! বইয়ের প্রত্যেকটি চরিত্র! এখন অনেক বড় হয়ে গেছি, বুঝে নিতে কষ্ট হয়না কোনটা ভাল কোনটা খারাপ। হ্যাঁ, এই বইটি আমার এখনও সেই আগের মতই ভাল লাগে। শুধু ভাল লাগার একটু পরিবর্তন এসেছে #শাহেদ চরিত্রটার মধ্যে। অন্যরকম চরিত্র। বাস্তবে এ ধরণের মানুষ অপছন্দই করি! কিন্তু দুই বোনের ভালবাসাটা সত্যি অনেক ভাল লেগেছে! কিন্তু সবদিক বিশ্লেষণে #তুমি_আমায়_ডেকেছিলে_ছুটির_নিমন্ত্রণে অসাধারণ একটি বই! বইয়ের প্রেমে পড়েই বইয়ের নাম দিয়ে নিজে একটা কবিতাও লিখেছিলাম :) তাই, পড়ে দেখতে পারেন চমৎকার এই বইটি। হ্যাপি রিডিং :)
Fiction
0
হুমায়ুন আহমেদ স্যার বরাবরই আমার প্রিয় লেখক। হিমুসমগ্র ১ম খন্ড খুবই দারুণ একটি বই। অসাধারণ সব হিমু গল্পের সমাহার। বইটি পড়ে খুব ভালো লেগেছে। মনে হচ্ছে হিমু আর আমি এখন এক। আসলে হিমু চরিত্রটি হুমায়ুন আহমেদ স্যারের সৃষ্ট সেরা চরিত্রগুলোর মধ্যে অন্যতম। যে কাউকে হিমু চরিত্রটি আকর্ষন করতে সক্ষম।
Fiction
0
ঘরের মাঝামাঝি কয়েকটা চেয়ার বসানো হয়েছে, তার একটাতে ফারিহা বসে আছে। টুনি ছোটাচ্চু হাত ধরে তাকে টেনে এনে ফারিহাপুর কাছে আরেকটা চেয়ারে বসিয়ে দেয়। ঘরের বাচ্চা-কাচ্চারা সবাই চোখের কোনা দিয়ে ছোটাচ্চু আর ফারিহাকে লক্ষ করছে কিন্তু আগে থেকে বলে দেয়া আছে কেউ যেন তাদের দিকে সরাসরি না তাকিয়ে থাকে, তাই সবাই বিয়ের হৈ-হুল্লোড়ে ব্যস্ত আছে, এরকম ভান করতে লাগল। ফারিহাপুর কাছে চেয়ারে বসে ছোটাচ্চু গম্ভীর মুখে ফারিহাকে বলল, “কেমন আছ?” ফারিহাপু বলল, “ভালো।” ছোটাচ্চু বলল, “ও।” তারপর দুইজন আর বলার মতো কোনো কথা খুঁজে পেল না। দুইজনই মুখ শক্ত করে সামনের দিকে তাকিয়ে বসে রইল, তাদের দেখে মনে হতে থাকে তারা একজন আরেকজনের চেনে না। টুনি চোখের কোনা দিয়ে দুইজনকে লক্ষ করে তারপর দরজার দিকে তাকায়। সেখানে গুড্ডু দাঁড়িয়ে আছে। টুনি তাকে একটা সিগন্যাল দিল, তখন গুড্ডু ছুটতে ছুটতে ভিতরে ঢুকে চিৎকার করে বলল, “বরযাত্রী এসে গেছে। বরযাত্রী এসে গেছে।” (less)
Childrens-Book
2
বইঃ হিমুর নীল জোছনা লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ ধরনঃ উপন্যাস হিমুর নীল জোছনা'। অন্যটি 'হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম'। এই দুইটি উপন্যাসে লেখক সরাসরিভাবে আক্রমন করেছেন দেশের সাম্প্রতিক রাজনীতি, রাজনৈতিক দল আর রাজনৈতিক নেতাদের। 'হিমুর হাতে কয়েকটি নীলপদ্ম' উপন্যাসটির পটভূমি ছিল নব্বইয়ের দশকের শুরুর দিকে বেগবান হওয়া এরশাদ বিরোধী আন্দোলন। আর 'হিমুর নীল জোছনা' বইয়ের পটভূমি ২০০৮ সালের নির্বাচন পরবর্তি সময়ে আওয়ামী সরকারের শাসনামল। 'হিমুর নীল জোছনা' বইটিতে একের পর এক বোমা ফাটিয়েছেন লেখক। কখনো তিনি ছাত্র রাজনীতির নামে রাজনীতি দলগুলো দেশের ছাত্রসমাজকে কিভাবে অনৈতিকতার চূড়ান্তে পৌঁছে দিচ্ছে তা তুলে ধরেছেন আবার কখনো তিনি ক্ষমতা দখলে মরিয়া রাজনীতিকদের বিচিত্র আচরণকে ইঙ্গিত করেছেন। তিনি দেখিয়েছেন কিভাবে সরকারি দলের সাথে ঘটা যেকোন অপ্রীতিকর ঘটনাকেই আখ্যা দেয়া হয় বিরোধী দলের ষড়যন্ত্র হিসেবে আবার ছাত্রলীগের কেউ অপরাধী হিসেবে চিহ্নিত হলে সরকার মহল দাবি করে অপরাধী মূলত শিবিরের লোক, ছাত্রলীগের সর্বনাশ করতে গোপনে দলে ঢুকেছে। রাজনৈতিক দলগুলো 'বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবির রহমান' আর 'মেজর জিয়াউর রহমান' এই দুইটি নামকে ব্যক্তি স্বার্থে বানিজ্যিকীকরণ করে চলেছে সেটাও দেখানো হয়েছে। উঠে এসেছে হলুদ সাংবাদিকতার চিত্র, পুলিশের ঘুষ খেয়ে অপরাধিকে ছেড়ে দেয়ার চিত্র। নির্দোষ ব্যক্তিদের জেলে পুরে বিখ্যাত সব মামলার আসামি বানিয়ে পুলিশ ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রনালয় কিভাবে নিজেদের আসল দায়িত্ব থেকে সরে আসছে সেটাও দেখানো হয়েছে। আর এত সবের মাঝখানে যেকোনো ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে সাধারণ মানুষের প্রতিক্রিয়া কতটা চমকপ্রদ হয়, সেটা তো দেখানো হয়েছেই! এই বইয়ে সবচেয়ে বড় বোমাটি লেখক ফাটিয়েছেন হিমুর কন্ঠকে কাজে লাগিয়ে প্রশ্ন তোলার মাধ্যমে যে বঙ্গবন্ধু হত্যাকান্ড আর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে শেখ হাসিনার গ্রেপ্তারের সময় ছাত্রলীগের ভূমিকা কি ছিল যে তারা নিজেদেরকে দেশের রাজনীতির ভবিষ্যৎ বলে দাবি করে। একজন সাহিত্যিক হিসেবে ক্ষমতাবানদের দিকে আঙ্গুল তোলা যে কতটা ঝুকিপূর্ণ তা লেখক জানতেন এবং এ জন্য এই বইয়ের ভূমিকায় লেখক সরাসরি এই বই লেখার প্রেক্ষিতে নিজের কি পরিণতি হতে পারে সে বিষয়ে শংকাও প্রকাশ করেন। হুমায়ুন আহমেদ তার লেখক জীবনে আড়াইশ'র বেশি বই লিখেছেন। অনেক বইয়ের বিষয়বস্তুর সাথে প্রত্যক্ষভাবে রাজনীতির যোগাযোগ ছিল। কিন্তু সেসব স্থানেও লেখককে দেখা গেছে দুইদিক ব্যালান্স করে কথা বলতে। কিন্তু নিজের জীবনের একেবারে শেষ প্রান্তে, হিমু সিরিজের ২১তম বইতে এসে লেখক নিঃসংকোচে যেভাবে দেশের রাষ্ট্রব্যবস্থা ও সরকারকে নিয়ে স্যাটায়ার করেছেন, তা তাঁর আগে কোন লেখককে ফিকশনধর্মী লেখার মাধ্যমে করতে দেখিনি। এ দিক থেকে ব্যাপারটা সত্যিই অভূতপূর্ব। ক্ষমতাবানদের নিয়ে লেখক কি কঠিন কঠিন সব রসিকতা করেছেন, তাঁর সাক্ষী হতে হলে 'হিমুর নীল জোছনা' বইটি পড়তেই হবে। ব্যক্তিগত মতামতঃহিমু এই বইতে দেশের প্রতিটি সচেতন ও নিরপেক্ষ মানুষের কন্ঠস্বর হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে। এ এমনই এক বই যা শুধু হিমু ভক্তদেরই না বরং দেশ ও সমাজ সচেতন সকল পাঠকেরই দারুণ ভালো লাগবে। এত বিস্তারিতভাবে লেখকের দেশ ও দেশের সাম্প্রতিক অবস্থা নিয়ে ভাবনার চিত্র অন্য কোন বইতে যে ফুটে ওঠে নাই তা বলাই বাহুল্য।
Fiction
0
*বই নিয়ে কিছু কথাঃ * পারসোনাল ব্র্যান্ডিং ফর প্রফেশনাল সাকসেস এই বইটি আপনি কেনো পড়বেন ? প্রত্যেক মানুষই জীবনে সফলতা অর্জন করতে চায়। বেশিরভাগ মানুষ সফলতা অর্জন করার কারণগুলো জানে না। এককথায় আপনি তখনই সফলতা অর্জন করতে পারবেন যখন আপনি নিজেকে একজন অথেনটিক পারসোনাল ব্র্যান্ড হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। এই বইটিতে পারসোনাল ব্র্যান্ডিং এর এ টু জেড তথ্য-উপাত্ত উল্লেখ করা হয়েছে আছে। কর্পোরেট দুনিয়ার সেরা উদ্যোক্তা, সিইও, সেলিব্রেটিদের পারসোনাল ব্র্যান্ড ডেভেলপমেন্ট করার কৌশল, মূলনীতি ইত্যাদি এই বইতে উল্লেখ করা হয়েছে। পারসোনাল ব্র্যান্ডিং নিয়ে লিখিত এই বইটি বাংলা ভাষায় লেখা প্রথম বই।
Motivational
6
রবোমানবেরা পৃথিবীকে দখল করে নেবে ভবিষ্যতে তার বিরুদ্ধে মানুষের বেঁচে থাকতে হবে। তাই পৃথিবীর কিছু মানুশকে অন্ন এক পৃথিবীতে পাঠানোর জন্য প্রস্তুতি নেওয়া হয়। মোট সাতজন মানব মানবী।সাতজনের ছোট দল। ইহিতা,সুহা, টুরান, টর, নীহা, ক্লদ ,নুট।নেতৃত্বগুণে আর সাহসিকতায় তাদের দলপতি ইহিতা। কিন্তু কিন্তু ওদের সাথে ছদ্ম-পরিচয়ে উঠে পড়েছে দুটি রবোমানবও। ছয়শত মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে কেপলার টুটুবি গ্রহে নতুন সভ্যতা গড়ে তুলবে তারা । সমস্যা হওয়ার কারনে তারা নেমে পড়ে তেজস্ক্রিয় প্রাণীর গ্রহ মঙ্গল গ্রহে। যে গ্রহে রয়েছে ভয়ঙ্কর তেজস্ক্রিয় প্রানী। যাদের চোখেও দেখা যায়না। পৃথিবীর কোনো প্রাণীর মতো নয়। মনে হয় মানুষের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ দিয়ে একটি অতিকায় কুৎসিত ক্লেদাক্ত কীট তৈরি করা হয়েছে। সেই সাথে ছদ্দবেশী রবোমানব রা চায় সত্যকারের মানুষদের ধ্বংস করতে। তাই রবমানব দুটিকে তাদের শনাক্ত ও করতে হবে একি সাথে। টুরান, ইহিতাদের ভয় এর সাথে সাথে আশংকাগুলোও ঢুকে যেতে থাকে। পারবেতো ওরা বেঁচে থাকতে? কিন্তু বিজ্ঞান একাডেমীর চেয়ারম্যান সব কিছু শেষ জানতেন। কিন্তু এক বিশেষ উদ্দেশ্যে তিনি সব পর্যবেক্ষণ করতে থাকেন । এবং শেষ মুহুর্তে করা কাজগুলোতে প্রমানিত হয় মানব সভ্যতাকে তিনি বাঁচাতে চেয়েছেন। রক্ষা করতে চেয়েছেন। চেয়েছেন নতুন পৃথিবী শুরু হক। মানুশের মধ্যে মানবতা আবার জেগে উঠুক। একতা জেগে উঠুক। যে মানবতার উপরে কিছুই নেই। সর্বকালে যে কারণটার জন্য যেমন মানুষ বেঁচে থাকতে চেয়েছে, সেই একই কারণে মানুষ প্রাণ দিয়ে দিতেও দ্বিধা বোধ করে না।সেটা হল ভালোবাসা ।
Science-Fiction
4
পদ্মার পলিদ্বীপ-আবু ইসহাক বুক মিভিউ পদ্মা নদীর মাঝি আর পদ্মার পলিদ্বীপ। এর আগে পড়লাম তিতাস একটি নদীর নাম। পদ্মা নামের মধ্যেই মনে হয় হিংস্রতা যৌনতা মিশে আছে। তিতাস নদী নির্ভর উপন্যাস যেমন শান্ত, বয়ে চলা। পদ্মা তেমনি হিংস্রতা, মৃত্যুতে ভরপুর। উপন্যাসের শুরুতে কতজনের অভিমত পড়ে পড়ার আগ্রহ আরো বেড়ে গিয়েছিল। “পর্বত গৃহ ছাড়ি বাহিরায় যাবে নদী সিন্দুর উদ্দেশ্যে, কার সাধ্য রোধে তার গতি”। বয়সের দোষ নয়তো অবিবাহিত থাকবার দোষ। জরিনা চরিত্র আসলেই রহস্যময়। রোমান্টিকতার দিক থেকেও উপন্যাসটি দোষে দুষ্ট। বিশেষ করে শেষে এসে ফজলের জ্ঞান গরিমায়, নায়ক ফজল হয়ে উঠায়-পদ্মার কষ্ট আর বুঝা যায়নি। পদ্মা নদীর মাঝিতে যেখানে কুবের নায়ক হয়েও সময়ের সাধারন চরিত্র। সেখানে ফজল নায়ক তো নায়কই, সবকিছুই তার পক্ষে। গ্রামের মাতবরদের সাথে ফজলের যুদ্ধ না দেখিয়ে তাকেই মাতবর হিসেবে প্রতিষ্ঠা করে, লোভী মাতবরদের শাস্তি দেখানো হয়েছে। পা ধোয়া থেকে চৌধুরী জঙ্গুরুল্লাহ সেই হিসেবে ভিলেন আর কি। ভিলেনের মত নায়িকা নিয়ে টানাটানি করেন। হুম সিনেমা বটে। অনেকদিন লেখা হয়না, তাই বুক রিভিউ এর মানে নিম্নগতি ক্ষমাপ্রার্থনীয়।
Fiction
0
''শেষ বিকেলের মেয়ে'' জহির রায়হান রচিত একটি রোমান্টিক প্রেমের উপাখ্যান। উপন্যাসের কথক কাসেদ, পেশায় একজন কেরানি। কিন্তু লেখক তার লেখনীর মাধ্যমে কাসেদকে নায়কের মর্যাদা দেয়ার পাশাপাশি, তাকে বেশি মাত্রায় মার্জিত ও রুচিবোধ সম্পন্ন ব্যক্তি হিসাবে পাঠকদের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন এবং চরিত্রটিকে অতিরঞ্জিত করা হয়েছে একজন কেরানির ক্ষেত্রে। এছাড়া কেরানি কাসেদের জীবনে আসা তিনজন নারী জাহানরা, শিউলি এবং সালমা কাউকেই সে ভালোবাসার বান্ধনে বাঁধতে পারেনি। সালমা যখন কাসেদের সাথে দূরে নিরুদ্দেশ হয়ে যাবার প্রস্তাব দেয়, তখনও কাসেদ নির্বাক ছিল। এমনকি সে জাহানারাকেও ঘরের স্ত্রী বানাতে ব্যর্থ হয়, একই সাথে সে শিউলির কাছ থেকে বিতাড়িত হয়। এসকল দিক কাসেদ চরিত্রটিকে পাঠকের হৃদয়ে হতাশার ছাপ ফেলেছে। জাহানারা ও শিউলি দুইজনই স্বচ্ছল পরিবারের আধুনিক মেয়ে। কিন্তু কাসেদের প্রতি দুর্বলতা পাঠককে বিস্মিত করে, আবার জাহানারা তার হৃদয় গহীনে কাসদেরে জন্য ভালোবাসার বীজ বপণ করলেও, কখনও প্রকাশ করেনি। এক পর্যায়ে জাহানারা কাসেদকে ভুল বোঝে এবং নিজেকে আড়ালে নিয়ে যায়। জাহানারা কেন এ ধরনের সিদ্ধান্ত নেয় নিজের আত্নমর্যাদাবোধ বজায় রাখার জন্য নাকি কাসেদের কাছ থেকে অনাকাঙ্খিত আচরণের জন্য ? জাহানরা কি তবে অভিমানকেই বেশি গুরুত্ব দিল, প্রকৃত ভালোবাসার কাছে নত না হয়ে? লেখক ইচ্ছা করলে এই বিষয়টা পরিষ্কার ভাবে উপস্থাপন করতে পারতেন। আবার শিউলি চরিত্রটিও পাঠকের হৃদয়ে স্থান করে নিতে পারেনি, যদিও সে পুরোপুরি সংস্কারমুক্ত এবং আধুনিক মেয়ে। অন্যদিকে, নাহার সর্ম্পূণ ব্যতিক্রম একটি চরিত্র, যার মাধ্যমে লেখক তার লেখনীর সব রহস্য লুকিয়ে রেখে, সর্বশেষে রহস্যের উদঘাটন করেছেন। এবং নাহার চরিত্রটির মাধ্যমেই লেখক নারীদের মাঝে থাকা অদম্য সাহস ও বিরত্ব প্রকাশ করেছেন, নাহার প্রমাণ করতে সক্ষম হয়েছে যে সকল ভুলবোঝাবুঝি, অহংবোধ এবং অভিমানের উর্দ্ধে ভালোবাসা। জাহানারা যা পারেনি, নাহার তার প্রকৃত ভালোবাসার টানে অসম্ভবকে সম্ভব করতে পেরেছে।এভাবে করে নাহার হয়ে যায় উপন্যাসের “শেষ বিকেলের মেয়ে”। লেখক ইচ্ছা করলে জাহানারাকে কাসেদের ঘরের স্ত্রী করে দিতে পারতো। কিন্তু, লেখক এই পন্থা অবলম্বন করেনি, যা উপন্যাসকে ভিন্নভাবে উপস্থাপন করেছে এবং পাঠকের হৃদয়ে অন্যরকম ভালোলাগার অনুভূতি সৃষ্টি করেছে। কেরানি কাসেদ কি কখনও জানত যে তার ঘরে থাকা মেয়েটিই হবে, কাসেদের জীবনসঙ্গী ? হয়ত, না। “শেষ বিকেলের মেয়ে” উপন্যাসে জহির রায়হান সাধারণ এই ব্যাপারটিই তার সুনিপুন লেখার মেধ্যমে পাঠকের কাছে চমৎকার ভালে তুলে ধরেছেন।
Fiction
0
হুমায়ন আহমেদ এর লেখা গল্পগুলোর মাঝে অন্যরকম এক ধরণের আকর্ষণ থাকে। দ্বিতীয় মানব গল্পটিও তার ব্যাতিক্রম নয়।এই গল্পের মূল চরিত্র হিসেবে খলিলুল্লাহকে দেখা যায়। যার আরেক নাম অরণ্য। তবে অন্যান্য চরিত্রসমূহের গুরুত্বও ভালোভাবে ফুটে উঠেছে গল্পটিতে। গল্পের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ চরিত্রগুলো হচ্ছে, মাহতাব হোসেন এবং তার মেয়ে টুনটুনি। এছাড়াও আরও কিছু পার্শ্বচরিত্র জালাল খাঁ, হেডমাস্টার হাবিবুর রহমান, বারেক। এদেরও গল্পে বেশ ভালো ভূমিকাও রয়েছে।গল্পের শুরুতে দেখা যায় খলিলুল্লাহ গ্রাম্য থেকে আসা এক যুবক। যাকে হেডমাস্টার হাবিবুর রহমান নেত্রকোনা থেকে ঢাকাতে মাহতাব হোসেন এর নিকট পাঠিয়েছে। তিনি খলিলুল্লাহ এর কাছে মাহতাব হোসেনের জন্য একটি চিঠিও দেন। ওই চিঠির মাধ্যমে মাহতাব হোসেন খলিলুল্লাহ এর বিস্ময়কর কিছু ক্ষমতার কথা জানতে পারেন। যেমনঃ পানির নিচে নিঃশ্বাস না নিয়েই খলিলুল্লাহ ঘন্টার পর ঘন্টা থাকতে পারে, কোন রকম ইলেক্ট্রনিক্স সম্পর্কে জ্ঞান না থাকার পরও খলিলুল্লাহ যে কোন ইলেক্ট্রনিক্সের যন্ত্রপাতি ঠিক করতে পারে। মাহতাব হোসেন এবং তার মেয়ে কৌতুহল বশত খলিলুল্লাহ এর কিছু পরীক্ষা নেয়। এসব পরীক্ষার মাধ্যমে তারা তার ক্ষমতার বাস্তব কিছু প্রমাণ পায়।খলিলুল্লাহকে নিয়ে আরও বিশদভাবে পরীক্ষা করার জন্য মাহতাব হোসেন তার বইপাগল বন্ধু জালাল খাঁ কে ডেকে আনে। তারা খলিলুল্লাহকে নষ্ট টিভি, ভয়েস রেকর্ডার ঠিক করতে দেয় খলিলুল্লাহও কোনরকম পূর্ব জ্ঞান ছাড়াই সেগুলো ঠিক করে দেয়।এদিকে মাহতাব হোসেন এর মেয়ে টুনটুনির সাথে খলিলুল্লাহ এর বেশ ভালো বন্ধুত্ব হয়ে যায়। টুনটুনি খলিলুল্লাহর নতুন নাম দেয় অরণ্য। সে খলিলুল্লাহকে পড়াশোনা শিখানো শুরু করে। এক্ষেত্রেও দেখা যায় খলিলুল্লাহের মেধা বিস্ময়কর। মাহতাব হোসেন ও তার বন্ধু জালাল খাঁ খলিলুল্লাহের এসব ক্ষমতার ব্যাখ্যা খুঁজতে চেষ্টা করে। জালাল খাঁ এর মতে খলিলুল্লাহ ডারউইনের বিবর্তনবাদ অনুযায়ী মানুষের পরবর্তী পর্যায়। Homo Superior। জালাল খাঁ খলিলুল্লাহকে একটা নতুন যন্ত্র বানাতে বলে। খলিলুল্লাহ তাতে সম্মতি দিয়ে বলে সে টুনটুনির জন্য একটি যন্ত্র বানাবে যে যন্ত্র মানুষের অতীতের কথা রেকর্ড করতে পারবে। জালাল খাঁ এর উৎসাহ ও সহযোগিতায় খলিলুল্লাহ তার কাজ শুরু করে।কিন্তু মাহতাব হোসেন খলিলুল্লাহকে নিয়ে প্রচন্ড চিন্তিত ছিলেন। একদিন রাতে তিনি তার সহকারী বারেককে ডেকে খলিলুল্লাহকে মেরে ফেলার আদেশ দেন। মাহতাব হোসেন এর কথামত বারেক খলিলুল্লাহকে হাত পা বেঁধে ইটের ভাটায় ফেলে দেয়।যেদিন রাতে খলিলুল্লাহকে মেরে ফেলা হয় সেদিনই টুনটুনির প্রচন্ড জ্বর আসে। সে গোসল করতে বাথটাবে গিয়ে অবাক হয়ে লক্ষ্য করে সেও খলিলুল্লাহর মত নিঃশ্বাস না নিয়েই পানির মধ্যে থাকতে পারছে!!খলিলুল্লাহ আসলে কে ছিল? সে কি যন্ত্র তৈরী করতে চেয়েছিল যার ফলে মাহতাব হোসেন তাকে মেরে ফেলার হুকুম দেয়? তাকে কেন মাহতাব হোসেন ভয় পেত? আর, টুনটুনি? তার কি হল? সেও কি খলিলুল্লাহ এর মত হয়ে গেল?জানতে চান এসব প্রশ্নের উত্তর? তবে, দেরি না করে জলদি পড়ে ফেলুন বইটি।
Science-Fiction
4
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা বই- অল্টার অব ইডেন। লেখক- জেমস রলিন্স। অনুবাদ- নাজিরুল বাশির। ধরন- ক্রেচার এন্ড টেকনো থৃলার। পৃষ্ঠা- ২৪০। প্রকাশনী- আদী। প্রধান চরিত্র- লোরনা পোল্ক, জ্যাক মেনার্ড, র‌্যান্ডি মেনার্ড, ব্রুস বেনেট, ডানকান, থিবোডক্স ব্রাদারস। ২০০৩সালে ইরাক যুদ্ধের সময় দুই ইরাকি শিশু বাগদাদ চিড়িয়াখানায় ঢু মারে খাবারের খোজে। সেখানে একই সময় হাজির হয় আর্মি ধরনের কিছু লোক যারা একটি গোপন কর্ম্পাটমেন্ট খুলে। সেই কর্ম্পাটমেন্ট থেকে একটি ভয়াল ধরনের অদ্ভুত পশু বেরিয়ে একজন লোককে হামলা করে। ছেলেগুলো কোনমতে পালিয়ে বাচে। সাতবছর পরের ঘটনা। ফ্লোরিডার উপকূলে একটি পরিত্যক্ত ট্রলার আবিষ্কৃত হয় যাতে পাওয়া যায় অদ্ভুত ধরনের কিছু প্রাণী। যেমন পাওয়ালা অজগর, টুইন বানর। স্পষ্টই বোঝা যায় এগুলোকে পাঁচার করে আনা হচ্ছিলো। পশু চিকিৎসক লোরনা পোল্ককে ডেকে আনা হয় এই পশুগুলোর এমন অদ্ভুত ও ভিন্ন শারীরিক বৈশিষ্ট্য কেনো তা খুজে বের করার জন্য। তাকে কাজ করতে হবে জ্যাক মেনার্ডের সাথে যার সাথে তার রয়েছে একটি গোপন অন্ধকারচ্ছন্ন অতীত। এমন অতীত যা তারা দুজনেই ভুলে যেতে চায়। কিন্তু পেশাদারীত্বের খাতিরে তারা একসাথে কাজ শুরু করে। গবেষনায় লোরনা বুঝতে পারে এই প্রাণীগুলোর ওপর কেউ বাইরে থেকে গবেষনা করে এমন করেছে। যারফলে এরা উন্নতমানের। আর খারাপ খবর হচ্ছে সেই ট্রলার থেকে একটি বুদ্ধিমান ও প্রচন্ড শক্তিশালী প্রাণী পালিয়েছে। নিজ লক্ষ্যে এগিয়ে চলছে সে এবং সামনে যাকে বাধা হিসেবে পাচ্ছে তাকেই মেরে ফেলছে। লোরনা ও জ্যাকের অবস্থা যেনো আরো খারাপ করতেই মাঠে নামলো আয়রণ ক্রীক। এক ভয়ানক গোপন মার্সেনারি সংস্থা, নিষ্ঠুরতাই যাদের বৈশিষ্ট্য। প্রাণীগুলো চায় তারা। কেনো? প্রাণীগুলোকে কেনো তারা বলছে ব্যাবিলন প্রজেক্ট। কি সেই ব্যাবিলন প্রজেক্ট? বাইবেলের সাথে এর সর্ম্পকই বা কি? বর্তমানে বাংলাদেশে জেমস রলিন্স ভীষন জনপ্রীয় একটি নাম। আমাদের দেশে তার উত্থান হয় আমাজনিয়া দিয়ে। এরপর একে একে তার বাকি বইগুলোও অনূদিত হতে থাকে। সিগমা সিরিজ দিয়ে ইতিমধ্যেই তিনি সকল পাঠকের মন জয় করে নিয়েছেন। তার সিগমা সিরিজের প্রায় সব বই ইতিমধ্যে অনুবাদ হয়ে গেছে। তবে তার নন-সিগমা বইগুলোও বেশ সুন্দর এবং অসাধারন। অল্টার অব ইডেন তেমন একটি বই। যেখানে পর্দাথ ও জীববিজ্ঞানের সাথে বাড়তি সংযোগ স্থাপন করেছে বাইবেল। জেমস রলিন্স সবসময় বাস্তবতার সাথে মিলিয়ে বই লেখার চেষ্টা করেন। এটাতেও তার ব্যাতয় ঘটেনি। বইতে উল্লেখিত সমস্ত তথ্যই বাস্তবিক। তাকে অনেক রির্সাচ করে বইটি লিখতে হয়েছে। পাঠক হয়তো শুরুতে খুব বিরক্ত অনুভব করবেন পড়ার সময়। ধৈর্য্য হারিয়ে ফেলতে পারেন। কারন জীববিজ্ঞানের জটিল সব শব্দ ব্যবহৃত হয়েছে বইতে। কিন্তু ধৈর্য্য ধরে পড়লে ঠকবেন না নিশ্চিত। মানুষটার জ্ঞান যে কতো গভীর তা না পড়লে বোঝা যায় না। আর অনুবাদককে কিন্তু বিশাল একটা ক্রেডিট দিতে হয়। এই বই অনুবাদ করা যেনোতেনো কর্ম না। বিজ্ঞানের প্রচুর কঠিন কঠিন সব শব্দ ও টপিকে ভরপুর। তাকে যে অনেক খাটনি করতে হয়েছে বইটি অনুবাদের জন্য তা পরিষ্কার বোঝা যায়। যারা আমাজনিয়া পড়ে পছন্দ করেছেন তাদের জন্য এটি তেমনই এক মজাদার উপ্যাখান নিয়ে আসবে। বইটি কেনো যেনো লাইম লাইটে আসেনি। অথচ বইতে উত্তেজনার কোনো কমতি নেই। বিষয়বস্তু একটু কঠিন এই আরকি। তবে ধৈর্য্য ধরে পড়লে পরে আর অতো কঠিন লাগবেনা। আশা করি সবার ভালো লাগবে পড়তে। রেটিং- ৪.৯০/৫.০০
Thriller
1
দৈর্ঘে বইটি ছোট হলেও এই বইটির গুরত্ব অনেক। কমুনিজম সম্পর্কে যাদের আগ্রহ আছে তাদের জন্য একটি মুল্যবান গ্রন্থ। কমিউনিস্ট বিপ্লবের উদ্দীপনার পেছনে এই গ্রন্থের ভূমিকা অপরিসীম। কমিউনিস্ট ইস্তেহারের প্রথম ভাগের নাম "বুর্জোয়া ও প্রলেতারিয়েত"। এই ভাগে সামন্ততান্ত্রিক সমাজ থেকে পুঁজিবাদের জন্মের কাহিনী বলা হয়। মার্ক্স পুঁজিবাদের আকাশচুম্বী উৎপাদন ক্ষমতাকে যথাযথ স্বীকৃতি দেন। তবে পুঁজিবাদের ধ্বংসাত্মক ক্রিয়াকলাপ তিনি তাঁর রচনায় উদ্‌ঘাটিত করেছেন। তাঁর মতে অকল্পনীয় হারে পণ্যোৎপাদন বাড়লেও সমাজ থেকে দারিদ্র্য দূর হয়নি। তিনি পুঁজিবাদের অন্তর্বিরোধ এবং আর্থিক সংকটের বিশ্লেষন করেছেন। এই ইস্তেহারে ধনতন্ত্রের অন্ধকার দিক দেখিয়ে পরিবর্তে অন্য কোনো সমাজব্যবস্থার কথা বলা হয়নি। তবে বলা হয়েছে, প্রচলিত সমাজব্যবস্থার গতিশীলতা থেকেই ঘটনাক্রমে ধ্বংসাত্মক শক্তির জন্ম হবে। কমিউনিস্ট ইস্তেহার-এর ভেতর যে মূলচিন্তা প্রবাহমান তা এই যে ইতিহাসের প্রতি যুগে অর্থনৈতিক উৎপাদন এবং যে সমাজ-সংগঠন তা থেকে আবশ্যিকভাবে গড়ে উঠে, তাই থাকে সেই যুগের রাজনৈতিক ও বুদ্ধিবৃত্তিগত ইতিহাসের মুলে। সুতরাং জমির আদিম যৌথ মালিকানার অবসানের পর থেকে সমগ্র ইতিহাস হয়ে এসেছে শ্রেণী সংগ্রামের ইতিহাস। আধুনিক বুর্জোয়া সম্পত্তির অনিবার্যভাবে আসন্ন অবসানের কথা ঘোষণা করাই ছিল এই বইয়ের লক্ষ্য।
Political
3
সাকসেস থ্রো এ পজেটিভ মেন্টাল এটিটিউট’ বইয়ের কিছু কথাঃ একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে সাফল্য অর্জন করুন বইটি এমন নয় যে অনেক মনীষীদের উক্তি ও ব্যাখ্যা বিশ্লেষণ দিয়ে ভরা। এমনকি এটা অনুপ্রেরণার উক্তিতেও যে ভরপুর তা নয়। অনেকের কাছে এটা সত্য নাও লাগতে পারে। কিন্তু সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে এটা এমন এক বই যা পাঠ করলে আপনি আপনার দুই পায়ে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়াবেন এবং একটি ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে কাজ আরম্ভ করবেন যতক্ষণ পর্যন্ত না আপনি সাফল্য অর্জন করছেন। কথাটা জাদুর মতো মনে হলেও এটা পুরোপুরি সত্য। এই বইটি পুরোপুরি বাস্তবতা কেন্দ্রিক। বইটিতে বিশ্বের বড় বড় অসংখ্য লোকজনের সাফল্য যাত্রা সম্পর্কে বর্ণনা দেওয়া হয়েছে; তারা কী ধরনের বাধা-বিপত্তির সম্মুখীন হয়েছে এবং কীভাবে সেগুলোর মোকাবিলা করেছে তাও বলা হয়েছে। এসব ঘটনাবলি থেকে নেপোলিয়ন হিল কিছু সাধারণ সূত্র আবিষ্কার করেন যা যেকোন মানুষই তার জীবনে কাজে লাগাতে পারে। আর কেউ যদি এই সূত্রগুলো তার বাস্তব জীবনে কাজে লাগায় তবে তার জীবনে আমূল পরিবর্তন ঘটবে, যা অবশ্যই ইতিবাচক। বইটি থেকে আমরা অজস্র ভালো জিনিস শিখতে পারবো। কীভাবে =>অধ্যবসায় গঠন করতে হয় =>নিজের ভেতরের ভীতি দূর করতে হয় =>নিজের জীবনে যা চাই তা অর্জন করতে হয় =>নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণ না হওয়া পর্যন্ত চেষ্টা করতে হয় =>প্রতিটি বাধার সামনে দৃঢ় পদে দাঁড়াতে হয় =>অলসতাকে পরাস্ত করতে হয় (আপনি যদি অলস হয়েও থাকেন তবে বইটি পাঠের পর আর কখনো পূর্বের ন্যায় অলসতা দেখাতে পারবেন না) =>জীবনের প্রতিটি মুহূর্তে চেষ্টা করবেন =>আপনার কাজকে উপভোগ করবেন =>ইতিবাচক মনোভাব দ্বারা ব্যর্থতার মুখোমুখি হবেন =>জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে নিজেকে চ্যালেঞ্জ জানাবেন =>খারাপ কিছুর সম্মুখীন হলে ইতিবাচক মনোভাব বজায় রাখবেন =>নিজেকে সৎভাবে বিচার করবেন =>বেঁচে থাকার আসল মানে খুঁজে পাবেন . . . . এবং আরও অনেক কিছু আপনি যদি আপনার জীবনকে উপভোগ করতে চান বা জীবনে কিছু পেতে চান তবে এই বই আপনাকে সেই দিকেই পরিচালিত করবে। আপনি এই বইকে আপনার জীবনের একটি নির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে কাজে লাগাতে পারেন। আপনি জীবনে সুখী হন এবং সফলতা লাভ করেন এই কামনায় শেষ করছি। -ফজলে রাব্বি নেপোলিয়ন হিল অলিভার নেপোলিয়ন হিল (২৬ অক্টোবর, ১৮৮৩ – ৮ নভেম্বর, ১৯৭০) ব্যক্তিগত উন্নয়নের একজন আমেরিকান লেখক। তিনি সুপরিচিত তার বই 'চিন্তা করুন এবং ধনী হোন' (১৯৩৭) এর জন্য। বইটি সর্বকালের শ্রেষ্ঠ ১০টি আত্ম উন্নয়নমূলক বইয়ের একটি। তিনি ১৯০৮ থেকে ১৯২৮ পর্যন্ত টানা বিশ বছর আমেরিকার সবচেয়ে ধনী ৫০০ জন ব্যক্তির ওপর গবেষণা চালিয়েছেন এটা জানার জন্য যে কেন তারা সফল এবং অন্যরা ব্যর্থ। তিনি সাফল্য অর্জনের জন্য যে সূত্রাবলি আবিষ্কার করেন তা পুরোপুরি অব্যর্থ। আজকে বর্তমানেও যেকেউ সূত্রাবলি কাজে লাগাতে পারে এবং নিজের জীবনে সাফল্য, সুখ ও সমৃদ্ধি অর্জন করতে পারে। ডব্লিউ. ক্লেমেন্ট স্টোন উইলিয়াম ক্লেমেন্ট স্টোন (৪ মে, ১৯০২ – ৩ সেপ্টেম্বর, ২০০২) ছিলেন একাধারে একজন ব্যবসায়ী, লোকহিতৈষী ব্যক্তি ও আত্ম উন্নয়নের নতুন ধারার একজন লেখক। স্টোন একজন বাস্তব উদাহরণ যিনি একদম মাটি থেকে উঠে ধনী হয়েছেন। তাঁর বাবা ১৯০৫ সালে মারা যান। মাত্র সাত বছর বয়স থেকে তিনি সংবাদপত্র বিক্রি আরম্ভ করেন এবং পরবর্তীতে হয়ে ওঠেন একজন ধনী ও মহান ব্যক্তি। তাঁর অন্যতম সফলতা হচ্ছে অগ মানডিনো, যিনি একজন মদ্যপায়ী ছিলেন, তাকে স্টোন তাঁর ছত্রছায়ায় নিয়ে একজন সফল ব্যক্তি হয়ে উঠতে সহায়তা করেন। অগ মানডিনো পরবর্তীতে সাকসেস ম্যাগাজিনের সম্পাদক হন।
Motivational
6
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই- রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনোও খেতে আসেন নি। লেখক-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দীন ধরন-থ্রিলার পৃষ্ঠা-২৭১ মূল্য-২৭০ প্রকাশনী-বাতিঘর রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনো খেতে আসেন নি; এটা বইয়ের নাম হলেও গল্পে এটা একটা রেস্টুরেন্টের নাম। এটা অবস্থিত সুন্দরপুর নামক মফস্বল শহরের রাস্তার পাশেই। শহর বললেও আদতে একে ছবির মতো সুন্দর গ্রাম বলাটাই বোধহয় ভালো । রবীন্দ্রনাথ যে এখানে কখনোই খেতে আসেন নি, আর আসবেন না এটা সবাই জানে। কিন্তু এখানে এই জায়গাটার আছে প্রবল একটা আকর্ষণ। অনেকটা মোহগ্রস্ত করে দেয়। যাই হোক, এখানে এসেছেন একজন সাংবাদিক । তিনি এ জায়গায় পা ফেলার সাথে সাথেই টের পান, এখান কার বাতাসের গন্ধটাও কেমন রহস্যময়। কেমন জানি টেনে রাখে। তিনি আরো অবাক হন রেস্টুরেন্টে প্রবেশ করে, এখানকার ওয়েটার থেকে সবকিছুই আরো বেশি রহস্যময়, কেমন জানি! এরপর আবারো বিব্রত হন, খাবারে লিস্ট দেখে! এসব কি খাবার! এত কিছুর পরও কিছু অর্ডার দেওয়া হলো। কিন্তু এবার তাকে, আরো একবার বেশ করে চমকে যেতে হলো । কেননা খাবারের মান বেশ উচ্চ। এমনকি এতোটাই সুস্বাদু যে আঙুল চেটেও আশ মেটানো দায়! এটাই কি মূল রহস্য! এটাই কি এখানকার আকর্ষণ! এর জন্যই কি ছুটে আসা! এবার তো তিনি, আরো বেশি মোহগ্রস্ত। জানা দরকার এই রেস্টুরেন্টের মালিক কে! কি তার পরিচয়? কি তার এই রেসিপি! কিসের গুনে এতো টেস্ট! কেন মানুষ একবার এখানে পা রাখলে, বার বার ফিরে আসতে চায়! আসলে সুন্দরপুর শহর যতোটা না সুন্দর, তার থেকে বেশি রহস্যময়। হয়তো এ রহস্য উদ্ধারেই এসেছেন তিনি। নয়তো নয়। কয়েকদিন আগে ঢাকা থেকে নিখোঁজ হয় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এক গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তার ভাগ্নে। যে ট্যাক্সি করে সে যায়, তার কাছে খোজ পাওয়া গেছে, শেষ সময়ে সে এই "রবীন্দ্রনাথ এখানে কখনও খেতে আসেনি "রেস্টুরেন্ট এ এসেছিল। এরপরের খবরে জানা গেছে, সে একমাত্র লোক নয়। আরো কয়েক জন এরকম লোক নিখোঁজ হয়েছে, যাদের শেষ গন্তব্য ছিলো, এই রহস্যময় রেস্টুরেন্ট। আর এখান থেকেই তারা হাওয়া। সাংবাদিকের বেশ আগ্রহ এই রেস্টুরেন্ট আর তার মালিক সম্পর্কে। তিনি খোঁজ নিতে শুরু করেন বিভিন্ন উপায়ে। খোঁজ নিতে গিয়ে সে জানতে পারে অনেক কিছুই। এ ব্যপারে সাহায্যের জন্য সে হাত করে লোকাল থানার ইনফর্মার আতর আলীকে। তাকে লোকে বিছিবি ডাকে। সে ই মূলত সাহায্য করে সাংবাদিক কে অনেক কিছু জানতে। কিন্তু কথা হলো এই লোকের এত জানার দরকার কি? ইনিই বা কে? কেনই বা এখানে পা ফেলেছেন? এর উত্তর কিছু দূর গেলেই হয়ত পাঠক পেয়ে যাবেন। যেমন রহস্যময় নাম রেস্টুরেন্টের তেমনি রহস্যময় খবর জানাতে থাকেন আমাদের লেখক। এমনকি এক সময় সুন্দরপুর টপকিয়ে, এ দেশ টপকিয়ে, কাহিনীর খাতিরে তিনি নিয়ে যান। হাজার হাজার মাইল দূরে আন্দিজ পর্বতমালায়! কেমনে কি! এত কিছুর পর বের হয়ে আসে এমন কিছু, যা সত্যিই অবিশ্বাস্য। গ্রামে একজন গোর খোদক আছে, কেউ মারা গেলেই সে কিভাবে জানি টের পেয়ে যায়। আর নিজ থেকে কবর খুঁড়ে রাখে! কাহিনীর কথা কি বলব! গল্পের নাম আর বইয়ের প্রচ্ছদ কেমন জানি ঘোর সৃষ্টি করে দিয়েছে আগেই। আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না, রহস্যটা ঠিক কোন জায়গায়। পুরো গল্পের শুরুতে আমার শুধুই গুলিয়ে যাচ্ছিলো, একটা সময় অধৈর্য হয়ে যাচ্ছিলাম। ব্যপারটা এমন, লেখক প্রথম পাতাতেই কাহিনীর বর্ণনাটা এমন ভাবে করেছেন, সেখানেই কিছু একটা উদ্ধার করে ফেলবো এমন ভাব। কিন্তু তখনি যখন কিছু ঘটলো না, এমনকি কিছু দূর গিয়েও যখন কিছু হলো না তখন আমাকে ধৈর্য ঠিকি ধরতে হয়েছিলো। এবং সেটা বেশ খানিকটা সময়। আর যখন প্রথম রহস্যময় চরিত্রের হদীস পেলাম এরপর আর মোটেও একগেয়ে লাগেনি। তারপর থেকে শুধুই ছিলো মূল রহস্য জানার পালা। এমনকি খুব দ্রুতই আমি পাতা উল্টে যাচ্ছিলাম, কাজটা কতটা ঠিক ছিলো জানি না। সত্যিই আমি অনেক বেশী আগ্রহী হয়ে উঠেছিলাম, কি হচ্ছে এসব? এর শেষ কোথায়, এটা জানার জন্য। কিন্তু কাহিনীর শেষটা এমন হবে বা রহস্যটা ঠিক এখানে দাড়াবে, তা আমি ঘুনাক্ষুরেও চিন্তা করি নি। এতটাই চমকে গেছি। আমি এটাকে ভয় বলবো নাকি হতভম্ব বলব, মাথায় কাজ করছিলোনা। সত্যিই একেবারে শিউরে উঠেছিলাম। গল্পের প্লট অসম্ভব সুন্দর। লেখক চরিত্র গুলো সাজিয়েছেন ঠিক ততটাই সুন্দর করে। রেস্টুরেন্ট মালিক, সাংবাদিক, আতর আলী ছাড়াও গ্রামের কিছু চরিত্র একেবারে অসাধারণ করে চিত্রায়িত করেছেন।সত্যি বলতে রেস্টুরেন্টের বর্ণনা, গ্রামের বর্ণনা, এমনকি কাহিনীর বর্ণনাও সত্যিই আমি যেন দেখছিলাম। কাহিনীতে টুইস্ট, সাসপেন্স যাই বলি না কেন সবই ছিলো শুরু থেকে শেষপর্যন্ত। লেখক কাহিনী বেশ রগড়ে নিয়েছেন এতে করে চিত্র গুলো আরো বেশি করে ধরা পড়েছে। রেটিং৪.৫/৫ রকমারি লিংক - https://www.rokomari.com/book/97647/রবীন্দ্রনাথ-এখানে-কখনও-খেতে-আসেন-নি
Thriller
1
তলিয়ে যেতে থাকা জীবনে একটু হলেও আশার দ্যুতি ছড়াতে "জাদুকাঠির" ভূমিকা বলে শেষ করা যাবে না । আমরা প্রায়শই দিকহীন হয়ে পড়ি,ম্যানিয়াকদের মত সহসাই আশাবাদী হয়ে উঠি,হিমালয় জয় করলাম বলে ! তারপর হঠাৎ করেই আশার বেলুনে পিন ফুটে যায়,আমাদের স্বপ্নগুলোও উবে যায় । আশা আর উদ্যমের সাথে সামঞ্জ্যতা থাকে না বলে আমরা তখন হতাশায় ভুগি । আমার মনে হয়,আমাদের নৈমিত্তিক জীবনে যত হতাশার মুখোমুখি হয়,সেগুলোর সিংহভাগ আমাদের থেকেই সৃষ্টি হয় ! সঠিক সময়ে,সঠিক পরিকল্পনা এবং সঠিক কাজটি করতে না পারলে আশার গুঁড়ে বালি বা কাঁকড় পড়লে তাঁতে হতাশারই বা দোষ কোথায় ? ব্যাপারটা এই নয় যে,হতাশা বা নিরাশা বা আশাহীনতা সুখকর কিছু । কিন্তু আশা যদি বাস্তবানুগ এবং নিয়ন্ত্রিত প্রকৃতির হয়,তাহলে সেখানে ব্যর্থতার সম্ভাবনা বিলক্ষন কম । "জাদুকাঠি" বইটি এই বোধেরই জন্ম দিবে । আমাদের এমন একটি বইয়ের সত্যিই খুব দরকার ছিল । যে বইয়ের বিষয়গুলো একেবারেই আমাদের "জীবন থেকে নেয়া" অতি পরিচিত ঘটনা । যেগুলোতে নিজেকে খুঁজে পাওয়া যায় বারবার। আজহারুল ইসলামকে ধন্যবাদ,সহজ ভাষায়,সব শ্রেণির মানুষের কাছে জীবনের নতুন একটা বোধের জন্ম দেওয়ার জন্য । শুভ কামনা রইল । এই প্রয়াস অব্যাহত থাকবে,এই আশাই রাখছি ।
Motivational
6
মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যারের অত্যন্ত এবং অত্যন্ত মজার অসাধারণ একটি কিশোর উপন্যাস "নাট বল্টু" । বল্টু । এক ক্ষুদে বৈজ্ঞানিকের নাম । তার গবেষণার বিষয়বস্তু আশেপাশের পরিবেশ । সে প্রশ্ন করতে ভালবাসে । সবকিছু নিয়ে । সে তার আম্মুর কাছ থেকে গল্প শুনতে ভালবাসে । বল্টুর আম্মু তাকে গল্পের বই থেকে গল্প পড়ে শুনাতে শুনাতে এক আশ্চর্য ঘটনা ঘটে গেল । বল্টু কেমন করে কেমন করে জানি বর্ণমালা না চিনেই পড়তে শিখে গেল এবং মোটা মোটা বই পড়ে শেষ করে ফেলল । আর সাথে তার বিচিত্র আর মজার সব গবেষণা তো আছেই । আর নান্টু হল বল্টুর সহযোগী । বল্টু যেমন মহান ক্ষুদে বৈজ্ঞানিক তেমনি নান্টু হল মহান ক্ষুদে দার্শনিক । ছোট্ট এই ছেলেটির চাল-চলন,কথা- বার্তা সবকিছুতেই একটা ভাবগম্ভীর দার্শনিকতার ছাপ ! বল্টু নানারকম এক্সেপেরিমেন্ট করে আর তার সহকারী হিসেবে থাকে নান্টু । নান্টু আবার কিছু বুঝতে না পারলে অনেক প্রশ্নও করে বল্টুকে । বল্টু তখন তাকে সেটা বুঝিয়ে দেয় ! তাদের এক্সপেরিমেন্টগুলো খুব মজার-মশা কেন ভূত হবে না,দেশে এত লোকের কাপড়ের অভাব অথচ মেয়েদের কেন এত লম্বা শাড়ি পড়তে হবে ! বল্টু আরো এক্সপেরিমেন্ট করে টিউব থেকে পেস্ট বের করার পর তা আবার ঢুকিয়ে ফেলতে চেষ্টা করে,ফ্যানের রিঙের সাথে শাড়ি পেঁচিয়ে তা দিয়ে ঝুলে থেকে অ্যাস্ট্রোনাট হবার চেষ্টা করে । শুধু কি তাই ! বল্টু নান্টুর বড় আপু মুনিয়াকে দিয়ে আইনস্টাইনের থিওরি অফ রিলিটিভিটি সংক্রান্ত একটা গবেষণাও করে ফেলে ! নান্টুর আমেরিকা থেকে আসা "সায়েন্টিস্ট" সবুজ ভাইয়াকেও বল্টু বোকা বানিয়ে দেয় । শেষে ছোটখাট একটা অ্যাডভেঞ্চার দিয়ে শেষ হয়েছে মজার এ কিশোর উপন্যাসটি । আমার ব্যক্তিগত মতামত থেকে বলব,আমি জাফর ইকবাল স্যারের বলতে গেলে একজন মহা ভক্ত । তাঁর যে কয়টি উপন্যাসের কথা আজীবন আমি যত্ন করে মনে রেখে দেব তার মাঝে একটি উপন্যাস হল এই নাট বল্টু । আসলে এ উপন্যাসের পাতায় পাতায় যে কত মজা আর কত ভাল লাগার সমাহার তা ঠিক ভাষায় বলে বোঝানো যাবে না । বুঝতে হলে উপন্যাসটি কাউকে একটিবার হলেও পড়ে দেখতে হবে ।
Childrens-Book
2
দরজায় টক টক শব্দ।  নিশাত দরজা খুলে দেখে, ছোট্ট একটা আধ নেংটো বাচ্চা হামা দিয়ে এসে পড়েছে।   পাশের ফ্ল্যাটের, ওখানে নতুন এসেছে এক দম্পতি। বাচ্চাটির মা-ও এলো পিছু পিছু। বয়স বেশী হবে না মেয়েটির। স্বামীর হাজার তিনেক বেতনের চাকরিতে তাদের এই ফ্ল্যাটে থাকার কথা না৷ সৌভাগ্যক্রমে তিন মাস থাকার সুযোগ পেয়েছে।   রুচিশীলা ধনাঢ্য পরিবারের নিশাতের সঙ্গে বৈপরীত্যই বেশী হবে পুষ্পর। কিন্তু পুষ্পর সরলতা আর বাচ্চাটার মায়ায় দুজনের মধ্যে একরকম বন্ধন তৈরী হলো।   পুষ্প আর রকিবের সন্তান পল্টুকে নিয়ে ছোট্ট সংসার। মাস শেষের খরচের হিসেবনিকেশ মিলিয়েও তাদের টানাটানির সংসারে ভালোবাসা টুকু অটুট ছিল। পুষ্প নতুন বাসার জন্য জমানো টাকা থেকে টুকটাক জিনিস কেনে, আর স্বপ্ন বুনে একদিন তার অনেক টাকা হবে, একটা গাড়ি হলে ওরা রাঙামাটি বেড়াতে যাবে।   কিন্তু তাদের সুখী সংসার তছনছ করে দিল এক লোভী থাবা। পুষ্পর চরম দুঃসময়ে শক্ত হয়ে পাশে দাঁড়ালো নিশাত।   দুজনে মিলে এই অন্যায়ের বিচার আদায় করে ছাড়বেই।   হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাস 'প্রিয়তমেষু'র শেষে লেখা, 'এই উপন্যাসের বর্নিত সকল ঘটনা ও চরিত্র কাল্পনিক।' কিন্তু সত্যি বলতে, এই উপন্যাসটা সবদিক দিয়েই বড্ড বেশী বাস্তব। অন্যান্য হুমায়ূনীয় রচনার মতো এতে চরিত্রগুলোর এলোমেলো খামখেয়ালীপনা নেই। বরং প্রতিটি চরিত্র কে খুঁজলে আমাদের এই অন্ধকার সমাজের এখানে সেখানেই পাওয়া যাবে।   পুষ্পর মতো অতিসাধারণ ঘরোয়া মেয়ে, যে জন্ম থেকে জানে সংসারের পরীক্ষায় পাশ করাই মেয়েদের আসল লক্ষ্য, অথবা নিশাতের মতো সুখ - সাচ্ছন্দ্যের জীবন কাটিয়ে আসা নারী - সব মেয়েদের জীবনই একটা বিন্দুতে গিয়ে এক হয়ে যায়। পথেঘাটে অচেনা লোকের ভীতি তো আছেই, নিজের ঘরেও মেয়েরা কোন অভিশাপে যেন কখনোই নিরাপদ হতে পারে না। আর নিপীড়নের শিকার মেয়েটিরও ভাবতে হয় 'কি লজ্জা! কি অপমান! কাকে বলবো? এতো বলার মতো নয়!' এই দুঃসময়েও পুষ্পর নিজেকে অপবিত্র মনে হয়। ভাবতে হয়, 'রকিব কি আর আগের মতো পুষ্পকে ভালোবাসবে?'   সাথে লোকলজ্জা তো আছেই। যে সমাজ মেয়েদের 'চুপ! চুপ!' বলতে জানে, তাদের ভয়ে রকিব ভাবে কেন যে সুন্দরী মেয়ে বিয়ে করেছিল। যেন দোষটা তার স্ত্রীরই। অথবা স্ত্রীকে চাপ দেয় পুলিশের ঝামেলায় না যাওয়ার জন্য। লোক জানাজানির অসম্মানের থেকে, চার দেওয়ালের মধ্যে ধর্ষিতা স্ত্রীর সম্মানহানিটা মেনে নেওয়াও অনেক সহজ হয়ে যায় তার জন্য। অন্যদিকে নিশাতের স্বামীও বিরক্তিবোধ করে অন্যের ঝামেলা ঘাড়ে এসে পড়ায়।   এই সমাজের ছত্রছায়ায় টিকে থাকে ধর্ষক মিজানের মতো অমানুষরা। যারা উচ্চমহলের পৃষ্ঠপোষকতায় বুক ফুলিয়ে হেঁটে বেড়ায়, বলতে পারে 'শুধু শুধু ঝামেলা করছেন। লজ্জা-অপমান সব আপনারই।' ভেবে নেয় এই লজ্জার ভয়ে প্রতিবার প্রতিটা মেয়ে গুটিয়ে যাবে।   কিন্তু ওসি নুরুদ্দিনের মতো মানুষও যে আছে। যার সহযোগিতায় কখনো কখনো পুষ্প আর নিশাতরা বিচার চাওয়ার জন্য সাহস করে উঠে দাঁড়ায়। মিথ্যে করে দেয় সুযোগসন্ধানীদের দূরাশা।   হুমায়ূন আহমেদের জনপ্রিয় অনেক উপন্যাসের ভীড়ে কিছুটা হারিয়ে যাওয়া উপন্যাস 'প্রিয়তমেষু'। এর গল্প যে খুব শক্তিশালী তা নয়, সমাপ্তিটাও গতানুগতিক। প্রতিটি চরিত্রের যা করার কথা ছিল তাই করেছে, তা পরিণতি হবার ছিল তাই হয়েছে। কিন্তু তা সত্বেও বিষয়বস্তু আর সাধারণ ভাবে বয়ে যাওয়া গল্পের জন্যই এটি প্রিয় উপন্যাসের তালিকায় সবসময় থাকবে।   বই: প্রিয়তমেষু   লেখক: হুমায়ূন আহমেদ   প্রকাশনায়: মাওলা ব্রাদার্স   প্রকাশকাল: ১৯৮৮   পৃষ্ঠাসংখ্যা: ৮৮   মূল্য: ১০০ টাকা
Fiction
0
কেউ কেউ বইটিকে ঐতিহাসিক উপন্যাস বলে থাকেন। আমার মতে এটিকে ঐতিহাসিক না বলে এডভেঞ্চার উপন্যাস বলাই শ্রেয়। লেখক প্রথমেই গল্পের শেষ পরিণতি বলে দিয়েছেন। আবার অনেক জায়গাতেই শাখা পরিণতি আগেভাগে বলে দিয়েছেন। এক অর্থে লেখক নিজেই তার বইয়ের স্পয়লার দিয়ে দিয়েছেন। ফিকশন পড়ার সময় যদি অনিশ্চয়তা না থাকে তাহলে মজা লাগে? আর তার উপর এডভেঞ্চার ধাঁচের উপন্যাসে তো জীবন নিয়েও আশংকায় থাকা লাগে। যদি আগে থেকেই জানা হয়ে যায় শেষে অমুক হয়েছে, এরা এরা বেঁচে রয়েছে তাহলে আর টানটান উত্তেজনা রইলো কই? তার উপরে আমার আরেক মামলা, ফিকশন পড়াতে আমার কেমন জানি একটা সমস্যা হয়েছে। নন-ফিকশনে এতই অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি যে ইদানীং ফিকশন একদমই পড়তে পারি না। উল্লেখ্য আগে ফিকশন পড়তে খুব ভালো লাগতো, পড়তামও প্রচুর। 'জিরো টু ইনফিনিটি'র সাথে যুক্ত হবার পর থেকে ধীরে ধীরে ফিকশন পড়ার মজাটা চলে গিয়েছে। এই বইটা অনেক সময় লাগিয়ে শেষ করলাম। কিশোর বয়সে পড়লে অনেক ভালো লাগতো, এই বয়সে (২২+) এসে উপন্যাসের অনেক বর্ণনা লেইম বলে মনে হয়েছে। আর সবচেয়ে বড় ব্যাপার হচ্ছে বইটা অনেকটাই যুদ্ধ নিয়ে। আর যুদ্ধবিদ্যা নিয়ে বেশ পড়াশোনা করেছিলাম। নন ফিকশনে। তাই যুদ্ধের নিয়ম নীতি, কলা কৌশল, আর্ট ইত্যাদির বাস্তবতার কথা যখন মাথায় থাকে তখন এই বইয়ের কল্পিত যুদ্ধকাহিনীকে একদমই ছেলেমানুষি কল্পনা বলে মনে হয়। আগ্রহীরা সান জু'র লেখা 'আর্ট অব ওয়্যার' পড়ে দেখতে পারেন ।
Thriller
1
From: রহস্যময় বিজ্ঞান জগত Writer: Jhon Kevin মহাকাশযান সিসিয়ানে করে একটি গ্রহতে যাচ্ছে একদল বিজ্ঞানী| তাদের দলপতি লু| সাথে আছে রোবট রু-টেক| তাদের উদ্দেশ্য টাইট্রন| একে আসলে গ্রহ বলা যায় কিনা এ নিয়েই সন্দেহ| সবার মাঝে বিরাজ করছে এক অশুভ আতঙ্ক| গ্রহটিতে রয়েছে লাল লাল গোলাকার বৃত্ত, যা পরিবর্তন করছে আকার-আকৃতি| গ্রহটিতে নেই স্বাভাবিক বায়ুমন্ডল| এর মাঝে বিজ্ঞানীরা আবিষ্কার করল সিসিয়ানের নিয়ন্ত্রণ আর তাদের হাতে নেই, একে নিয়ন্ত্রণ করছে এক অদৃশ্য শক্তি| তাদের না আছে নিজেদের রক্ষা করার ক্ষমতা, না আছে ধ্বংস ক্ষমতা| তারা কার্যত বন্দী| ঠিক এমন সময় আবির্ভাব ঘটল পদার্থবিজ্ঞানী ইউরির| তার রয়েছে অসাধারন বুদ্ধিমত্তা| কিন্তু টাইট্রন হতে পাঠানো হয়েছে এমন কিছু যা দিয়ে ধ্বংস হতে পারে মানবজাতি| এদিকে সিসিয়ানের মূল নেটওয়ার্ক ধ্বংস করে ফেলায় বাইরে যোগাযোগের কোন ব্যবস্থা নেই| এরই মাঝে ইউরি পেল নিউট্রিনো ছুড়ে দেওয়ার মতো একটি অস্ত্র| কিন্তু যা করার তা করতে হবে তিন ঘন্টার মাঝে| কারন, তিন ঘন্টা পর সিসিয়ানে বিস্ফোরণ ঘটবে| তারা কি পারবে তাদের রক্ষা করতে? আর এই গ্রহটিই বা কি? এটি কি আদৌ কোন গ্রহ? নাকি কম্পিউটারের বর্ণনানুযায়ী কোন নরক? জানতে চাইলে পড়ে ফেলুন| ব্যক্তিগত মতামত: এটি আমার পড়া সেরা সায়েন্স-ফিকশন| শুধু এটুকুই লিখলাম| যারা পড়েননি, তারা পড়ে ফেলুন| আর যারা পড়েছেন, তারা আবার পড়ে দেখতে পারেন|
Science-Fiction
4
কোয়ান্টাম মমতার সংক্ষিপ্ত রূপ হলো কোয়ান্টামম। কোয়ান্টাম স্বপ্ন দেখে এক মানবিক মহাসমাজের। যেখানে প্রত্যেকের অন্ন-বস্ত্র-শিক্ষা-স্বাস্থ্য-বাসস্থান হবে নিশ্চিত। ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-অঞ্চল নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষের স্বাধীন আত্মবিকাশের অধিকার যেখানে থাকবে সুরক্ষিত। আর বিশ্বাস করে কোয়ান্টামম থেকেই সূচিত হবে এ মনছবির বাস্তব অভিযাত্রা। তাই এ নামকরণ। সৃষ্টির শুরু থেকেই যে মানুষ ছিলো প্রকৃতির পরিপূরক, নগর সভ্যতার দাপটে সে মানুষ যখন একেবারে প্রকৃতিবর্জিত হয়ে গেলো তখন থেকেই শুরু হলো তার অশান্তি, অসুখ। তাই নগরজীবনের যান্ত্রিকতা ও কোলাহল থেকে মুক্ত হয়ে আধুনিক মানুষকে নির্জন প্রকৃতির মাঝে আত্মিক সাধনায় উদ্বুদ্ধ করার জন্যেই আমাদের এ উদ্যোগ। পাশাপাশি চলছে বঞ্চিত জনপদে সভ্যতার আলোকবর্তিকা পৌঁছে দেয়ার প্রয়াস। পরিচালিত হচ্ছে শিক্ষাসুবিধাবঞ্চিত শিশুদের আলোকিত মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার সুদূরপ্রসারি কর্মকাণ্ড। জাতি হিসেবে আমাদের পরিচয় অত্যন্ত গৌরবের। আমাদের ভাষা আন্দোলন, স্বাধীনতা যুদ্ধ নিয়ে আমরা গর্ব করি। তাই এ দেশকে গড়ে তোলার দায়িত্বও আমাদের। মানুষকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির মাধ্যমে জাগিয়ে দিয়ে এই কাজটি চমৎকারভাবে করছে কোয়ান্টাম। আমি প্রত্যাশা করি, কোয়ান্টামের এ আলোকিত জীবনের বাণীকে প্রতিটি ঘরে পৌঁছে দিতে পারলে প্রতিটি প্রাণ উজ্জীবিত হবে। আত্মশক্তিতে বলীয়ান হয়ে গড়ে উঠবে একটি শোষণমুক্ত নির্লোভ উদার সুশৃঙ্খল দেশ ও জাতি।
Motivational
6
#রহস্যময়_বিজ্ঞান_জগত_ও_রকমারি_ডট_কম_আয়োজিত_বুক_রিভিউ_প্রতিযোগীতা মহাকাশ যাত্রার জন্য ট্রেনিং শেষ করেছে য়ূহা, একজন কবি হয়ে মহাকাশযাত্রা করতে যাওয়াতে সবাই য়ূহাকে নিয়ে একটু দ্বিধার মধ্যে আছে। সত্যিই সে কি পারবে দীর্ঘ, নিঃসঙ্গ এক যাত্রায় নিজেকে মানিয়ে নিতে। য়ূহার মহাকাশযাত্রা চূড়ান্ত হলো, কুরু ইঞ্জিন চালিত এক সামরিক মহাকাশযানে চড়ে ভ্রমণে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত সে। এই কুরু ইঞ্জিন ১০জি ত্বরণেও অনির্দিষ্টকালের জন্য ধরে রাখতে পারে মহাকাশযানকে এমনকি একমাত্র এটিই ব্ল্যাকহোলের কাছে বিপজ্জনকভাবে গিয়েও বেরিয়ে আসতে পেরেছে। একটা স্কাউটশিপে করে বায়োডোম ধ্বংস করতে আসা একদল অপরাধীও আছে এ মহাকাশযানে। ক্যাপ্টেন ক্রবের নেতৃত্বে তাদেরকে ক্রয়োজোনিক ক্যাপসুলে ঢুকিয়ে, চরম শূন্য তাপমাত্রায় জড় বস্তুতে পরিনত করে রাখা হবে। অসাধারণ প্রতিভাসম্পন্ন তরুণ বৈজ্ঞানিক রায়ীনাও আছে ওদের সঙ্গে। সেও অ্যাটাকে অংশগ্রহন করে ধরা পড়েছে সামরিক বাহিনীর হাতে। শুরু হলো য়ূহার প্রত্যাশিত সেই মহাকাশযাত্রা। যানটি চালানোতে মানুষের কোনো ভূমিকা নেই, যা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রন করছে কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক, মানব মস্তিস্কের ছেয়েও জটিল এর প্রোগ্রাম। গন্তব্য কো-অর্ডিনেট করে দিলেই তা নিদিষ্ট ত্বরণে মহাকাশযানটিকে সঠিক জায়গায় নিয়ে যাবে। চলার পথে য়ূহা ধরতে পারলো কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক ওদের বোকা বানাচ্ছে। মূলত তা চলছে অন্য এক গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর কমান্ডে। যা কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ককে নিজের বশে করে মহাকাশযানটিকে টেনে নিয়ে যাচ্ছে অন্য এক অপরিচিত গ্রহের কাছে। এবার কি সেখান থেকে ফিরে আসতে পারবে য়ূহা সহ সেখানে থাকা সামরিক ক্রুরা? এমনকি তাদের সাথে থাকা সেই বন্দীরা? পারবে কি সেই প্রাণীর হাত থেকে মুক্ত করতে মানুষের সর্বোচ্চ প্রযুক্তিতে তৈরী এ মহাকাশযাকে? যার নিয়ন্ত্রন পুরো কোয়ান্টাম নেটওয়ার্কের হাতে , যেখানে কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ককেই চালাচ্ছে অন্য কেউ। জানতে হলে পড়ে ফেলুন অন্ধকারের গ্রহ বইটি। *********** অসাধারণ একটা বই, এক নিঃশ্বাসে পড়ে ফেলার মতো একটা বই। প্রতিটি পাতায় নতুন কিছু গল্প। মনে হচ্ছে আমি নিজেই ভেসে চলেছি সেই মহাকাশযান চড়ে। By: M R Bijoy
Science-Fiction
4
Almost all the stories written by Dr. Jafor Sir are very interesting, addicting and inspiring. This one is also very interesting. In this story , Litu's name was Laddu. But Litu's teacher changed his name and gave him the name Litu. Litu along his friends made a journey by boat to help the flood-affected people as volunteers. There wasn't any problem to reach their destination but while returning to home, they fell in a life risking danger. Rest of the story is nothing but an adventure of young adults....
Childrens-Book
2
কিছু কিছু্ উপন্যাস থাকে যেগুলো লেখা হয় কয়েক ঘন্টার ঘটনাকে নিয়ে। কিছুক্ষণ উপন্যাসটা ঠিক সেই রকম প্রেক্ষাপটে রচিত। যদি আপনি প্রচ্ছদ ভালো করে লক্ষ্যে করেন তাহলে কাহীনি আন্দাজ করতে পারবেন। হ্যা ট্রেন ভ্রমণ নিয়ে কাহীনি। এই ট্রেনে মোট যাত্রী ৬৪৯ জন। এসব যাত্রীদের মধ্যে সবচেয়ে জ্ঞানী, ধার্মিক, ডাক্তার, ক্ষমতাধর ব্যাক্তি নিয়েই আজকের কাহীনি। তবে আজ যে গল্পের নায়িকা যে কিন্তু খুবই সাধারন। নাম চিত্রা। চিত্রা যে কামরায় উঠেছে সেখানে আর একজন বুড়ো উঠেছে। চিত্রা জানতো না এই বুড়োর আসল পরিচয়, তাই অন্য কামড়ায় চলে গিয়ে পড়ে মহা বিপদে। অন্য যে কামড়ায় যায় চিত্রা সেখানকার একজন মাথা খারাপ মহিলা তার ডাক্তার ছেলেকে নিয়ে যাচ্ছিল আশ্চর্যের বিষয় মহিলা চিত্রাকে বৌমা বলে ডাকছে। ট্রেনে একজন মন্ত্রীআছে। তারা বেড়াতে যাচ্ছে এবং ট্রেনের দায়িত্বে থাকা লোক গুলোর প্রতি যখন খারাপ আচরন করছিল তখন উপর থেকে জানানো হয় মন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে তাকে বরখাস্ত করে দেয়া হয়েছে। ভয়ে মন্ত্রীর পরিবার ট্রেন থামিয়ে পালিয়ে যায়। তবে পালিয়ে যাওয়ার পরেই ঘটে মারাত্বক এক কাহিনী। অপরদিকে যে ধার্মিক লোক যাচ্ছে তেনারা স্ত্রীর বাচ্চা হবে। কিন্তু ট্রেনে কোন মেয়ে ডাক্তার নেই। আর মাওলানা চায়না কোন ছেলে ডাক্তার তার স্ত্রীর কাছে যাক। কিন্তু তার স্ত্রী প্রায় মরমর অবস্থায় চলে গেছে। প্রত্যেক এসব বিচ্ছিন্ন ঘটনা, শেষের দিকে এক বিন্দুতে মিলিত হয়। তবে এসব ঘটনায় আমার সবচেয়ে ভালো লাগে এক মহিলাকে যার সন্তান মারা গেছে এবং তার সেই মৃত সন্তান আজ ট্রেনেই যাচ্ছে। তো এভাবেই এগোয় কাহীনি, আমার অসম্ভব ভালো লেগেছে। আশাকরি আপনাদের ও লাগবে।
Fiction
0
:)
Fiction
0
best book ever
Political
3
It is a Great Book of that time Political Parties
Political
3
অন্দরমহল বইটি পড়ে ভালো লেগেছে। লেখক উপন্যাসটি অনেক যত্ন নিয়ে লিখেছেন। লেখাটি পড়ে হুমায়ূন আহমেদ স্যারের কথা মনে পড়েছে।
Fiction
0
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_ডিসেম্বর বইঃ বিজ্ঞানের একশ মজার খেলা লেখকঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল ধরনঃ ছোটদের গনিত ও বিজ্ঞান প্রকাশনীঃজ্ঞানকোষ মুল্যঃ১০০টাকা কাহিনী সংক্ষেপঃ বিজ্ঞানের একশো মজার খেলা জানার আগে গুরুত্বপুর্ন হলো এটা জানা যে বিজ্ঞান আসলে কি? এককথায় বলা যায় বিশেষ জ্ঞান আবার একটু আলাদাভাবে বলতে গেলে বলতে পারি, দৈনন্দিন জীবনে যে সকল জিনিসপত্র আমাদের জীবনকে সহজ থেকে সহজতর করে দিয়েছে এবং সময় বাচিয়ে দিয়েছে সেটাই বিজ্ঞান। বিজ্ঞান নিয়ে অনেক অনেক আবিষ্কার হয়েছে। আর দিনে দিনে আরো বাড়ছে। মানুষের জানার আগ্রহের কোন কমতী নেই। আর অনেক অজানার মধ্যে কিছু সহজ জিনিস কে লেখক এই বইটিতে তুলে এনেছেন। কোন স্কুলগামী শিক্ষার্থী যদি বইটি পড়ে, তাহলে তার বিজ্ঞানের প্রতি জানার আগ্রহ বাড়বে এবং সেই সাথে যেসব অভিজ্ঞতার কথা বলা হয়েছে সেগুলো পরীক্ষা করার জন্য তার অনেক ইচ্ছে জাগবে।। এক্সপেরিমেন্ট এর জিনিসপত্র???সেগুলো নিয়েও কোন চিন্তা নেই। কারন যেসব জিনিসের মাধ্যমে বইগুলো তে পরীক্ষা গুলো দেখানো হয়েছে সেগুলো একদম হাতের নাগালে এবং সহজলভ্য। তাই সবাই বইটা পড়ে এক্সপেরিমেন্ট করে তার জ্ঞানের পরিধি বাড়াতে পারে। এখানে যে সকল খেলার কথা বলা হয়েছে তার মধ্যে কিছু হলো এরকম, যেমন একটা বেলুন আমরা যদি মুখ দিয়ে ফুলায় তাহলে দেখি খুব সহজে সেটার আকৃতি বড় হয়ে যায় কিন্তু এই একই জিনিস যদি আমরা বোতলের মধ্যে নিয়ে ফুলাই সেইক্ষেত্রে দেখবো বেলুনটি আর ফুলবেনা।। কি কারনে ফুলবেনা?? আবার দেখা যায় যে ফানেলের মুখে বল রেখে নিচ থেকে ফু দিয়েও বলটি সরানো যায়না। দেখা যায় খুব কষ্ট করে এদিক ওদিক নড়াচড়া করলেও সুবিধা করতে পারা যায়না কেন এমন হয়?? আবার আমরা যখম কোন স্ট্র দিয়ে তরল কোন পানীয় খায়, দেখা যায় ১ টার চেয়ে ২ টা স্ট্র ব্যবহার করলে আমরা বেশী খেতে পারি কিন্তু কখনো কি আমরা দেখেছি যে ১ টা স্ট্র বাইরে দিকে রেখে আরেকটা ভিতরে রেখে একসাথে মুখ দিয়ে টানলে কি অবস্থা হয় তখন?? আবার আরেকটা পরীক্ষা যেমন বড় গামলাতে পানিপুর্ন করার পর সেখানে একটা বাটি রেখে তাতে পানিপুর্ন করে যদি একটা পয়সা মাঝ বরাবর ফেলে দেয়া যায় দেখা যাবে যে পয়সা টি কখনো মাঝের দিকে পড়বেনা। সবসময় হালকা বাঁকা হয়ে পড়ে একপাশে সরে যাবে। এরকম হওয়ার কি কারন হতে পারে?? এরকম ই ছোট খাটো পরীক্ষা দিয়ে সম্পুর্ণ বই পুরো একশ টা এক্সপেরিমেন্ট দিয়ে সাজানো। বইটা যদিও লেখা ছোটদের জন্য কিন্তু আসলে বড় রা বইটা অনায়াসে পড়তে পারবে এবং কিছু জিনিসের ধারনা স্পষ্ট হবে। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ বইটি অনেক ভালো লেগেছে। হাতের নাগালো পাওয়া জিনিস দিয়ে যে এতো গোছানো পরীক্ষা করা যায় সেটা বইটা পড়ে জানলাম। আশা করি ভালো লাগবে এই বইটিও।
Childrens-Book
2
কঠিন যুক্তি আর টান টান উত্তেজনায় ভরপুর ‘হুমায়ূন আহমেদ’ এর মিসির আলি অমনিবাস
Fiction
0
বাবার ট্র্যান্সফারের কারনে বহুদিনের বন্ধুদের ছেড়ে দূরে চলে যায় লিটু। কিন্তু নতুন জায়গায় সে পায় অসাধারণ কিছু বন্ধু। লিটু ও তার বন্ধুদের মজার কিছু ঘটনার উল্লেখ আছে এই কিশোর উপন্যাস এ। অপছন্দের শিক্ষককে ট্র্যান্সফার করানো, ভুয়া জিন বধ করা, ডাকাতের সাথে লড়াই সহ কিছু মজাদার ঘটনার সমাহার লিটু বৃত্তান্ত। কিশোর উপন্যাস হলেও সকলের ভালো লাগবে এই বইটি।
Childrens-Book
2
লেখিকার আগের বই "তোরসা" পড়েছিলাম। তাই অনেক প্রত্যাশা নিয়েই এবারের বইটি আসামাত্রই সংগ্রহ করলাম। বলতে দ্বিধা নেই, তাঁর নতুন বই "সিবতু" আমার প্রত্যাশাকেও ছাড়িয়ে গেছে। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত এক মুহুর্তের জন্যও লেখার ফ্লো ধীর হয়নি, বই রেখে ওঠাই সম্ভব হয়নি। থ্রিল, আবেগ, রোমান্স, আভিজাত্য, ঐতিহ্যের বণর্না আমার ভাল লেগেছে। বাঙ্গালী সাধারণ সমাজ ও জাপানী সামন্ততান্ত্রিক অভিজাত শ্রেণীর আবেগের গড়ন ও তার বহিঃপ্রকাশের স্বাতন্ত্রতার পারস্পরিক পরিমিত উপস্থাপন আমাকে মুগ্ধ করেছে। ওহনা ক্যাসেল ও তার অধিকর্তা লর্ড তাচিবানাকে আমার খুবই জীবন্ত মনে হয়েছে, যেন তাঁকে আমার আশেপাশেই টের পাচ্ছি । আমার মনে গেথে রয়েছে চেরী ফুলের perfect blossom নিখুঁত বর্ণনা।
Fiction
0
বইটা পড়া শেষ করেছি আজ প্রায় তিন দিন হলো। পড়া শেষ করে এখন পর্যন্ত আমাদের আঞ্চলিক ভাষায় "তাবদা" অর্থাৎ স্তম্ভিত অবস্থায় আছি। স্তম্ভিত কারণ উপন্যাসের কাহিণী, এর বর্ণনা, ধারালো লেখনী। সেবা প্রকাশনীর প্রথম দিকে আমরা কিছু মৌলিক রহস্য, রোমাঞ্চ, ভৌতিক, অ্যাকশন, মনস্তাত্ত্বিক উপন্যাস পেয়েছিলাম যা গুনে, মানে ছিল অতুলনীয়। সেই রকমের মৌলিক উপন্যাসের অভাব বোধ করি সব সময়ই। কিন্তু লেখক জাহিদ হোসেন তাঁর এই উপন্যাসে সেই অভাব পুরন করেছেন সার্থকতার সাথে। আগ্রহ জাগানীয়া শুরু, গতিশীল কাহিণীর বর্ণনা হাত থেকে বইটা রাখতে দেবেনা, সবশেষে আছে চমক আর আকর্ষনীয় পরিসমাপ্তি। পরিপূর্ণ রোমাঞ্চ, রহস্য উপন্যাস। আন্তরিক ধন্যবাদ লেখক সাহেবকে। বইয়ের প্রচ্ছদ সুন্দর, বাঁধাই ভালো। সম্পাদনা ভালো হয়েছে। নতুন লেখককে সুযোগ দেয়ার জন্য প্রকাশককে ধন্যবাদ। পাঠকদের প্রতি অনুরোধ বইটি কিনবেন, পড়বেন এবং সংগ্রহে রাখবেন।
Thriller
1
২০০৪ সালে শেখ মুজিবুর রহমানের লেখা চারটি খাতা আকস্মিকভাবে তাঁর কন্যা শেখ হাসিনার হস্তগত হয়। খাতাগুলি অতি পুরানো, পাতাগুলি জীর্ণপ্রায় এবং লেখা প্রায়শ অস্পষ্ট। মূল্যবান সেই খাতাগুলি পাঠ করে জানা গেল এটি বঙ্গবন্ধুর অসমাপ্ত আত্মজীবনী, যা তিনি ১৯৬৭ সালের মাঝামাঝি সময়ে ঢাকা সেন্ট্রাল জেলে অন্তরীণ অবস্থায় লেখা শুরু করেছিলেন, কিন্তু শেষ করতে পারেননি। জেল-জুলুম, নিগ্রহ-নিপীড়ন যাঁকে সদা তাড়া করে ফিরেছে, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে উৎসর্গীকৃত-প্রাণ, সদাব্যস্ত বঙ্গবন্ধু যে আত্মজীবনী লেখায় হাত দিয়েছিলেন এবং কিছুটা লিখেছেনও, এই বইটি তার সাক্ষর বহন করছে।
Political
3
‘মুক্তিযুদ্ধের পূর্বাপরঃ কথোপকথন’ তিনজন বীর মুক্তিযোদ্ধার রচিত গ্রন্থ। যারা স্বাধিকার আদায়ের আন্দোলনের সাথে দীর্ঘদিন ধরে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে ছিলেন এবং মাঠ পর্যায়ে যুদ্ধ করেছেন। মুক্তিযুদ্ধ শুরু হয়েছিল ১৯৭১ সালের ২৬শে মার্চ কিন্তু এর বীজটা বপন হয়েছিল আরও অনেক অনেক আগে। ৪৭ শে বিতর্কিত দেশভাগ। এরপর থেকে ক্রমেই বাঙালির উপর শোষণ, অত্যাচার, নিপীড়ন। ৫২’র ভাষা আন্দোলন, ৫৪’এর যুক্তফ্রন্ট, ৬৯’গন অভ্যুত্থান এভাবে নানা ঘটনাপ্রবাহের মধ্য দিয়েই ৭১। বাঁচতে হলে লড়াই করতে হবে। স্বাধিকার পেতে হলে স্বাধীন হতে হবে। এই স্বাধীনতা অর্জন করাটা সহজ ছিল। আন্তর্জাতিক শক্তিগুলোর অবস্থান ছিল সংঘাতময়। অভ্যন্তরীণ ঘটনাবলিরও ছিল নানামুখী স্রোত। এটা একটা ঐতিহাসিক আন্দোলন। এই আন্দোলনের সাথে সমাজের নানা পর্যায়ের, নানা পেশার মানুষ জড়িত ছিল। আরও ছিল বৈশ্বিক সংঘাতময় রাজনীতি। এজন্য মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণটাও অনেক দুরূহ একটা কাজ। এর জন্য পর্যপ্ত গবেষণা অনুসন্ধান ও অংশগ্রহণকারী, প্রত্যক্ষদর্শীদের বয়ান দরকার। তিন সক্রিয় অংশগ্রহণকারীর আলোচনা , পর্যালোচনা নিয়ে এই গ্রন্থ রচিত। এদের মধ্যে একে খন্দকার গ্রুপ ক্যাপ্টেন হিসেবে মুক্তিযুদ্ধে যোগদান করেন। তিনি রণাঙ্গন এবং নীতিনির্ধারনী উভয় জায়গাতেই কাজ করেছেন। এই বই থেকে অনেক কিছু নতুনভাবে জানা যায়। রাজনৈতিক উপরমহল জানতে যে পাকিস্তানী বাহিনী ঢাকা আক্রমণ করবে, তবুও তাঁরা কোন প্রস্তুতি নিয়ে। আমাদের সেনাকর্মকর্তারা রাজনৈতিক নেতাদের জানানোর পর, তাদেরকেও কোন ইন্সট্রাকশন দেয়া হয়নি। পূর্ব প্রস্তুতি থাকলে হয়তো এতো বিশাল পরিমাণ ক্ষতি হতো না। জানার পরেও কেন প্রস্তুতি নেয়া হয়নি, সেখানে প্রশ্ন থেকে যায়। তারপরও বাঙালি সেনারা নিজ উদ্যেগে সাথে সাথেই যে অল্প অস্র নিয়ে যে প্রতিরোধ যুদ্ধ শুরু করে , তা এক ঐতিহাসিক ঘটনা। এরকম নানা প্রশ্ন, উত্তর, আলোচনা, পর্যালোচনা নিয়েই এই বই। এক বসাতেই পড়ে ফেলার মত।
War
5
বই পর্যালোচনাঃ বইয়ের নামঃ বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর লেখকঃ ড. তারেক শামসুর রেহমান   ঘরনাঃ বিশ্ব ও রাজনীতি  ‘রাজনীতি’ শব্দে আগ্রহ এবং বিশ্ব সম্পর্কে জানার তৃষ্ণাকে পরিপূর্ণভাবে মেটানোর জন্য ড. তারেক স্যারের ‘বিশ্ব রাজনীতির ১০০ বছর’ যথেষ্ট, অন্তত নবীনদের জন্য। উল্লেখযোগ্য অধ্যায়গুলোর মধ্যে, (ক) রুশ বিপ্লব,  (খ) দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও এর ফলাফল,  (গ) নাৎসিবাদ, (ঘ) পূর্ব ইউরোপ, পেরেস্ত্রাইকা, গ্লাসনস্ত,  (ঙ) স্নায়ুযুদ্ধ,  (চ) চীনের সমাজতান্ত্রি আন্দোলন,  (ছ) ভিয়েতনাম যুদ্ধ,  (জ) আফগানিস্তান,  (ঝ) সোভিয়েন ইউনিয়নে সমাজতন্ত্রের পতন, লেলিন, স্ট্যালিন, ক্রুচ্ছেভ, সোভিয়েত সমাজে সংকট,  (ঞ) গ্যাট, এক কিয়োটা প্রকোটল.... সহ আরো গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সম্মেলনের কারণ, ফলাফল ইত্যাদি বিষয়গুলো সূক্ষ্ণাতিসূক্ষ্ণ রূপে আলোচনা করেছেন। বিংশ শতাব্দীর যে বিষয়গুলো বিশ্ব রাজনীতিতে আলোড়ন তুলেছিল, তা বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে গ্রন্থটিতে। বিশেষ করে দু’দুটো বিশ্বযুদ্ধ থেকে শুরু করে সোভিয়েত ইউনিওনের পতন পর্যন্ত প্রতিটি বিষয় আলোচনা করা হয়েছে। চীনের সংস্কার কর্মসূচিও আলোচনা থেকে বাদ যায় নি। গ্রন্থটির উল্লেখযোগ্য দু’টি অধ্যায় হচ্ছে নতুন আন্তর্জাতিক অর্তনৈতিক ব্যাবস্থা ও বিশ্ব পরিবেশগত সমস্যা। বিংশ শতাব্দীতে এ দু’টো বিষয় বিশ্ব রাজনীতিতে যথেষ্ঠ প্রভাব ফেলেছিল। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যাবস্থায় বিশ্ব বাণিজ্য সংসাথার ভূমিকা,বাণিজ্য জোট হিসেবে এদেশের ভূমিকা সঙ্গত কারণেই তা আলোচনা করা হয়েছে। চীনের সংস্কার কর্মসূচিও আলোচনা থেকে বাদ যায়নি। নিজের ব্যক্তিগত পাঠ প্রতিক্রিয়া বলতে গেলে বেশ গোলপাঁক লেগে যাবে! বইটি যথেষ্ট তথ্যবহুল ও সুপরিচর আকারে লেখা হয়েছে। বাংলাদেশের চুক্তি ও নীতিসমূহ গুরুত্বপূর্ণ বিধায় উভয় অধ্যায়ে বাংলাদেশের প্রসঙ্গটি আলোচনা করা হয়েছে। নিঃসঙ্গতার নীতি অনুসরণ করে যুক্তরাষ্ট্র যেমন তার অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করেছিল, তেমনি চীনও অর্ধশতাব্দী ধরে তার অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে ব্যস্ত তা দেখানো হয়েছে বইটিতে। গ্রন্থটির দুটো উল্লেখযোগ্য অধ্যায় হচ্ছে নতুন আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক অবস্থা ও বিশ্ব পরিবেশগত সমস্যা। বিংশ শতাব্দিতে এই দুটো বিষয় বিশ্ব রাজনীতিতে যথেষ্ট প্রভাব ফেলেছিল। আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার ভূমিকা, বাণিজ্যজোট হিসেবে এদেশের ভূমিকা সঙ্গতকারণেই আলোচনা করা হয়েছে। অন্যদিকে বিশ্ব পরিবেশগত সমস্যা শীর্ষক অধ্যায়ে স্থান পেয়েছে বিশ্বের উষ্ণতারোধ সংক্রান্ত কিয়োটো চুক্তি থেকে শুরু করে বিশ্ব ধরিত্রী সম্মেলনের বিষয়টি পর্যন্ত। রাষ্ট্রবিজ্ঞান, ইতিহাস, ও আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ছাত্রদের জন্য চমৎকার ও জ্ঞানগর্ভ বই। সাধারণ পাঠকরাও বইটি পড়ে বিশ্ব রাজনীতির ইতিহাস সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পারবেন।
Political
3
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_এপ্রিল বইয়ের নাম : বকুল ফুল লেখক : মনোয়ারুল ইসলাম প্রকাশনী : নালন্দা, প্রকাশকাল : বইমেলা ২০১৯ পৃষ্ঠা সংখ্যা : ১৩৫, মূল্য :২৭৫ "বকুল ফুল, বকুল ফুল সোনা দিয়া হাত কেনো বান্ধাইলি...!" বইয়ের নামটা দেখলেই গানটা মনে হয়ে যাবে! কিন্তু কাহীনিটা কি আদৌ গানটার সঙ্গে মিলে? . মাত্র একটা রাত যদি আপনার জীবনে এমনকিছু অপ্রত্যাশিত ঘটনা নিয়ে আসে; যার সংযোগ কখনই আপনার সঙ্গে ছিলো না, কিন্তু আপনি ওতপ্রোতভাবে এখন জড়িয়ে গেছেন সেই রাতের আঁধারের মত রহস্যের বেড়াজালে! তখন কি অনুভূতি হবে আপনার? এমনই একটা রাত, যতটুকু ভয়ংকর হলে জীবনের বাঁক নেতিবাচকভাবে ঘুরতে পারে, ঠিক ততটাই খারাপ হয়ে গল্পকথকের জীবনের সাথে মিশে যায়। এর আগেও এক রহস্যময়ী নারীর সঙ্গে তার দেখা হয়েছিলো দুবার, বছর দশেক আগে; কৃষ্ণনগরে। তাকে নাম জিজ্ঞেস করায় সে পুরনো জমিদার মহলটি দেখিয়ে বলে তার নামেই মহলটির নাম। সেই মহলের নাম ফটকে লেখা -'স্মিতা মহল, ১২১৭ বঙ্গাব্দ।' তার সঙ্গে গল্পকথকের আবার দেখা হয়ে গেলো ট্রেনে, তৃতীয়বারের মতন। কিছু জিনিসকে মাত্রই কাকতালীয় বলে উড়িয়ে দেয়াটা কতটুকু যৌক্তিক? এখান থেকেই মূলত কাহিনীর সূত্রপাত! শীতের রাতে সেই রহস্যময়ী নারী তাকে ট্রেন থেকে বের করে আনে চা খাবার কথা বলে। তার কথা বলার মধ্যে কিছুতো ছিলো যেটা গল্পকথক অগ্রাহ্য করতে পারেনি! আপাদমস্তক রহস্যে আবৃ এই আবেদনময়ী নারী যখনই পাশে থাকে, তীব্র বকুলের গন্ধ টের পাওয়া যায়! এই যা...এই ঠান্ডায়ও কেমন ফিনফিনে শাড়ি পরে রয়েছে, তার মধ্যে মানবীয় অনুভূতির উদ্রেক হয়না বুঝি! আবার কি করে যেন মনের কথাও বুঝে ফেলছে সে! এসব কি হচ্ছে! যতবার তাকে গল্পকথক দেখছিলেন, ঠিক যেন সেইই আগের ছবিটাই ভাসছিল, মেয়েটা দশবছরে একটুও বদলায়নি নাকি! নীলাসাগর গ্রামটা বেশ অদ্ভুত, রহস্য জটলা পাকিয়ে আছে কোণেকোণে! এই গ্রামে অদ্ভুতভাবে তরুণীরা হারিয়ে যায়! যুবাদেরও মৃত্যু হয় প্রায়শই! এই মৃত্যুগুলো আসলে স্বাভাবিক না। গ্রামবাসীর বদ্ধমূল ধারণা এর পিছে কৃষ্ণনগরের জমিদারবাড়ির হাত আছে। কিছু একটা সূক্ষ যোগসূত্র অবশ্যই রয়েছে নীলাসাগর আর কৃষ্ণনগরের মধ্যে! এমনই যোগসূত্র, যার শিকড় গল্পকথলের জীবন পর্যন্ত জড়াবে! নীলাসাগরের মাঝেই লাহুর নদী। ওখানে তিনটা ভিটা -লম্বা ভিটা, ময়লা ভিটা আর আর নতুন ভিটা। মূলত তিনটাই কবর! ময়লা ভিটায় গল্পকথক দেখা পায় এক গোরখোদকের, বেওয়ারিশ লাশ কবর দিতে দেখা যায় তাকে। এক পর্যায়ে তাকে খুবই করুন মৃত্যুর স্বীকার হতে দেখা যায়! দেখা মিলে এক কদাকার অবয়বের, শরীর ভর্তি টিউমার! সে কিছুতো একটা করছিলো কবরটাতে! কিছু খুঁজছিল কি? আবার তাকেই দেখা যায় লাহুর নদীর তীরে আসা নৌকায় সহযোগীদের সাথে। গল্পকথককে সাক্ষী হতে হয় আরো অনেক বিভৎস মুন্ডুহীন, বুকচেরা লাশ, কবর আরও ভয়ংকর রহস্যের। আর এই পুরো ঘটনাটি একটি রাতেই ঘটে! সেই ভয়ংকর রাত থেকে গল্পকথক ফিরে আসে, কিন্তু সেই নারী কিংবা বকুল ফুলের গন্ধ তাকে ছেড়ে যায়নি! মেয়েটা তাকেই কেন বারবার দেখা দিচ্ছে..আবার গল্পকথকও মেয়েটার উপস্থিতিতে মনে অদ্ভুত সস্তি পান। গল্পকথক কি জানতো..অজান্তেই সে ফেঁসে গেছে কারো আমানত পৌঁছে দেয়ার জালে! স্মিতার দরকার মুক্তি। আর এই মুক্তির মাধ্যম হতে কিভাবে গল্পকথক মধ্যস্থ হবে সেটা এক ঘনীভূত রহস্য। একই উপনামের আরেক রহস্যময় চরিত্র রুক্সীনি চৌধুরানী, আগাগোড়া রহস্যময়ী সেও কম নয়। এসব যা কিছু ঘটছে, তা নতুন নয়। এই শিকড় খুব গভীর পর্যন্ত ছড়ানো। আর এসব অদ্ভুত ঘটনার সঙ্গে সংযোগ রয়েছে এই রুক্সীনির প্রবলভাবে! গল্পকথক ক্রমশই এর ভেতরে প্রবেশ করছে, শেষটা যে তার হাত ধরেই হবার ছিল....! . #পাঠ_প্রতিক্রিয়া : অতিপ্রাকৃত ঘরানার এই বইটিতে লুকিয়ে আছে দুইশত বছর পুরনো পারিবারিক কোন্দলের কাহিনী। কাহিনীর পদে পদে হিংস্রতা, লালসা। লালসার স্বীকার হওয়া কতগুলো মানুষের আহাজারি। যেই লালসার প্রবলগ্রাসী ছোবল কিছু মানুষের জীবনে এতটাই বিপন্ন করেছিলো, যার অস্তিত্ব টের পাওয়া যাচ্ছিলো অনেকটা বছর পরও! লেখক পুরো বইয়ে আকর্ষণ বজায় রাখতে সক্ষম ছিলেন। তবে পুরো বইটাতে গল্পকথকের কোন নাম উল্লেখ ছিল না। সম্পূর্ণ বই জুড়ে স্মিতার তাকে সম্বোধন ছিলো -'মশাই।' মন্দ না, বরং গল্পকথকের কথা মনে আসলেই এই সম্বোধনটা কানে বাজে। এই বইয়ের যতটুকু খাস ছিলেন এই বকুলের গন্ধে আবৃত রহস্যময়ী নারী স্মিতা এবং গল্পকথক, তততাই রুক্সীনিও! একই উপনামের এই নারীর সঙ্গে স্মিতার রক্তের সম্পর্ক আছে বৈকি, যেটা ঠিক সূক্ষভাবে উজ্জ্ব আছে। যতটুকু টানটান উত্তেজনা অতিপ্রাকৃত বই পড়ার সময় অনুভূত হওয়া উচিত তার পুরোটাই ছিলো বলে আমি মনে করি। বকুল ফুল কি খুব প্রিয়? বকুলের মালা হাতে নিয়ে খুশী হয়না এমন মানুষই হয়তো বিরল। একবার এই বইটা পড়ুন, দেখুন তো তারপর..বকুলের গন্ধটা কি আগেরমত স্রেফ ভালোলাগা দিচ্ছে, নাকি সুগন্ধের সঙ্গে পাঠকমনকে উদ্বেলিত করার রসদও জোগাচ্ছে! পরিশেষে শুধু বলবো...আত্মতৃপ্তির সুখপঠন।
Fiction
0
আসিফ মেহ্দী মায়া বইটি পড়ে মায়া জাল সম্পকে ভাল জানতে পাইলাম । তাছাড়া তার বই লেখার ধরণ আমাদের হুমায়ূন আহমেদ স্যারের সাথে আনেকটাই মিল আমার কাছে মনে হয়েছে । “মায়াচ্ছন্ন পৃথিবীতে যারা মায়াহীনতার পথে হাঁটতে চায়, প্রকৃতি তাদের মায়াজাল থেকে বাঁচিয়ে রাখে ঠিকই, কিন্ত তারা জীবনেয়া রূপ-রস থেকেও বঞ্চিত হয়।’’ – আসিফ মেহ্দী
Fiction
0
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_ডিসেম্বর ১. এই পৃথিবীর দু'টো মানুষ কখনও এক নয়। তাদের মাঝে বাহ্যিক পার্থক্য যেমন আছে, তেমন তারা মানসিক ভাবেও আলাদা। এমনকি দু'টো মানুষের মাঝে বাহ্যিক মিল থাকলেও মননে, রুচিতে, চিন্তায় পার্থক্য থাকবেই। শরীর, মনের মতো পার্থক্য থাকে মানুষের যৌনতায়। ২. সময়টা গত শতাব্দীর নব্বইয়ের দশকের মাঝামাঝি। সে সময়ে টেলিভিশন কেবল জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। কিন্তু প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছতে তখনও অনেক বাকি। মানুষের বিনোদন কেবল নয়, ভরসার নামও রেডিও। আকাশবাণীতে কাজ করে অনিকেত। অনুষ্ঠান বরাবরে তার কাছে বিভিন্ন চিঠি আসে। সেসবের মাঝ থেকে কৌতূহল উদ্দীপক অনেক চিঠি অনিকেত জমিয়ে রাখে। সেসব চিঠিতে কেউ পাঠায় অদ্ভুত সব কবিতা, আবার অনেক কিশোর লিখে পাঠায় তাদের বয়ঃসন্ধি সময়ের অজ্ঞানতা, জটিলতা। যখনকার কথা বলা হচ্ছে, তখন রেডিও, সাহিত্যকে খুব পূত পবিত্র মনে করা হতো। তাই অনিকেত চাইলেও এমন একটা রেডিও অনুষ্ঠান করা সহজ ছিল না যেখানে অনিকেত এইসব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে। কিন্তু পরিবর্তনের হাওয়া হয়ত বইতে শুরু করেছিল তখনই। একটা অনুষ্ঠান করতে সমর্থ হয়েছিল অনিকেত। মনোরোগ বিশেষজ্ঞ, সাহিত্যিক, সমাজ বিশেষজ্ঞ নিয়ে গঠিত 'টীম' উত্তর দিয়েছিল অনেক প্রশ্নের। আর এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়েই অনিকেতের সামনে একটি নতুন বিষয় আসে, ঠিক নতুন না, তবে কাজের জন্য নতুন। সমকামিতা। ৩. অনিকেতের বাড়ির কাজের লোক 'দুলালের মা'। সেই দুলাল প্রথমে সব্জি এবং পরে মনোহরি পণ্য নিয়ে সাইকেলে ঘুরে বিক্রি করতো। দুলালের কথাবার্তা, চলন ছিল মেয়েলী। দুলাল একদিন হারিয়ে গেলো। অনেক বছর পর দুলালকে আহত অবস্থায় যখন পথের ধারে পাওয়া যায়, তখন তার ঊরুসন্ধিতে তার পুরুষত্বের চিহ্নটি ছিল না। প্রশ্ন হলো, 'লিঙ্গ-চিহ্ন'ই কি একজন মানুষকে 'পুরুষ' কিংবা 'নারী' হিসেবে বাঁচতে বলে? সামাজিকভাবে কিংবা শারীরবিদ্যার ভাষায় হয়ত তা-ই। যার লিঙ্গ আছে, সে পুরুষ, নারীর থাকবে যোনি। কিন্তু, প্রকৃতির খেয়ালে এমন কিছু মানুষ এই মাটিতে বসবাস করে, তাদের বাহ্যিক শরীর থেকে তাদের মন আলাদা। পুরুষের চিহ্নধারী একজন হতে পারেন মনে মনে নারী। কিংবা কোন শরীরে নারীত্বের চিহ্ন নিয়ে মনে মনে কেউ হতে পারে পুরুষ। অর্থাৎ কেবল শরীরের গঠন নয়, মনই বলে সে নারী, না পুরুষ। দুলালের ক্ষেত্রেও তা-ই হয়েছিল। তার মন তাকে বলেছিল সে নারী। দুলাল তাই বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছিল। কেন? আমাদের সমাজে মানুষকে বিচার করা হয় বাহ্যিকতা দিয়ে। সেখানে মনের কোন দাম নেই। অন্তর্দহন কেউ দেখে না। সমাজ ঠিক করে দিয়েছে পুরুষ হবে মারদাঙ্গা, নারী হবে ব্রীড়াবতী। তাই কোন পুরুষের মাঝে কমনীয়তা থাকলে তাকে 'লেডিস', 'মাইগ্যা' বলে পরিচিতি দেওয়া হয়। আর যদি মন থেকে সে হয় পুরুষের প্রতি আকর্ষিত, কিংবা তার মাঝে পৌরুষের চিহ্ন কম থাকে তবে তাকে 'হিজড়া' উপাধি দেওয়া হবে। ৪. হিজড়া শব্দে আজকাল অনেকের আপত্তি আছে। 'তৃতীয় লিঙ্গ' বলে তাদের পরিচয় করাতে চান। কিন্তু 'হিজড়া', 'বেশ্যা' আসলে কোন খারাপ শব্দ নয়, এগুলো গালিও নয়। এসব শব্দকে গালি হিসেবে ব্যবহার করা হয়েছে। কিন্তু কারা হিজড়া? মানুষের এই সমাজ বড় অদ্ভুত। এখানে বহু ধরনের মানুষ বাস করে। যাদের অনেকের সম্পর্কে আমরা তেমন কিছুই জানি না। হিজড়া সম্প্রদায় এমনই। আমরা তাদের সম্পর্কে জানি না, না জেনে ভয় পাই। সমাজ থেকে আপাত বিচ্ছিন্ন এই মানুষেরাও এই ভয়কে পুঁজি করেই নিজেদের গ্রাসাচ্ছাদনের ব্যবস্থাটা করে নেন। কেউ হিজড়া কেন হয়? অনেক রকম মত প্রচলিত আছে। কোথাও বলা হয় ঋতুমতী নারীর সঙ্গে সহবাসে যদি সে গর্ভবতী হয় তাহলে 'হিজড়া' সন্তান হয়। কিন্তু আসলে তারা কেমন হয়? তাদের লিঙ্গ চিহ্ন কি? সমকামিরাও কি হিজড়া? ৫. এই সব প্রশ্নের উত্তর দিয়েছেন স্বপ্নময় চক্রবর্তী। অনিকেতকে দিয়ে গল্প শুরু করে তিনি আমাদের নিয়ে গেছেন হিজড়াদের বাসস্থান 'খোল'-এ। সেখানে তারা কীভাবে বাস করে, তাদের সমাজের নিয়মের সাথে পরিচয় করিয়ে দিয়েছেন। অনিকেতের পরিচয় হয়েছিল কিছু সমকামীর সাথে, যারা একটি পত্রিকা প্রকাশ করে। সেখান থেকেই অনিকেত জেনেছিল, সমকামী হলেই সে 'লেডিস' হয় না। একজন সমকামী হতে পারে একজন সমর্থ পুরুষের মত। সমকামের বিষয়টা শরীরে থাকে না, থাকে মনে। তারাও সাধারণ মানুষের মতো চার হাত পায়ের মানুষ। পার্থক্য কেবল তাদের যৌন রুচিতে। এখানেই কেউ তাকে বলেছিল, "গোলাপ কেবল গোলাপি হবে এমন তো নয়। গোলাপ তো হলুদও হয়"। অর্থাৎ মানুষ সবাই এক হবে না, কিছু মানুষ আলাদা হয়। মানুষের মনে রয়েছে অনেক গলি ঘুঁজি। সেসবে ভ্রমণ করার মতো জটিল কাজটাই লেখক করেছেন এই উপন্যাসে। একজন পুরুষ কেন একজন পুরুষের প্রতি আকর্ষিত হবে? এটা কি কেবল মানসিক? ৬. না, কিছু শারীরিক বিষয়ও। ক্রোমোজোমের স্বাভাবিক বিন্যাসের ব্যত্যয়ের জন্য একজন পুরুষের মাঝে পৌরুষ কম হয়ে তার ভেতরে নারীত্ব জেগে উঠতে পারে। নারীর ক্ষেত্রে হতে পারে একই ঘটনা। এই পৃথিবী তার বুকে অনেক রহস্য নিয়ে বসে আছে। সেখানে রহস্য মানুষের শরীরেও। তাই কোন পুরুষের জন্ম হয় অপরিণত লিঙ্গ নিয়ে। হরমোনের স্বাভাবিক প্রবাহের ব্যত্যয়ের কারনে সে নিজেকে নারী হিসেবে ভাবতে থাকে। আকর্ষিত হয় পুরুষের প্রতি। সমাজ যখন তাকে মেনে নেয় না, সে চলে যায় সমাজ থেকে দূরে। আমরা এই উপন্যাসে দেখতে পাই শরীর ও মনের বৈচিত্র্য। যে বৈচিত্র্য, প্রকৃতির খেয়ালে সৃষ্টি, অথচ সে কারনেই মানুষগুলো সমাজচ্যুত। নিজেরা দোষ না করেও তারা দোষী। কখনও শরীর তাদের ধাওয়া করে, কখনও মন। ছেলেবেলার বন্ধু মঞ্জুকে স্নান ঘরে ভোগ করতে চেয়েছিল অনিকেত। সেই মঞ্জুর তিরস্কার বয়ে বেড়িয়েছিল অনিকেত, বহুদিন। অনিকেতের স্ত্রী শুক্লা কোনদিন মা হতে পারেনি, কেননা ডিম্বাশয় বাদ দিতে হয়েছিল তার। পরবর্তীতে বিছানায় পুতুল হয়ে পড়ে থাকতো শুক্লা। বহুদিন পর মঞ্জুর সাথে দেখা হয়ে অনিকেত জেনেছিল, মঞ্জুও বিছানায় কাঠ হয়ে পড়ে থাকতো। ছেলেবেলায় বহুবার যৌন হয়রানির শিকার হয়ে মঞ্জু এমন হয়ে গিয়েছিল। তবু সন্তান ধরতে পেরেছে সে। কিন্তু, তার ছেলে পরিমল সমকামী। ৭. পরিমল নিজেকে নারী ভাবে। নারী হিসেবেই নিজেকে সে একটু একটু করে গড়ে তুলেছে। নিজের নাম রেখেছে সে পরি। মঞ্জুর ছেলে পরিকে দিয়ে নতুন সময়ের শুরু। '৯৫ থেকে অনেকটা সময় পেরিয়ে এসেছি আমরা অনিকেতের সাথে। পৃথিবী বদলে যাচ্ছিলো খুব দ্রুত। সেই সঙ্গে বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান আর মূল্যবোধের পরিবর্তে আমরা বুঝতে শুরু করেছি যে সমকামীতা প্রকৃতির বৈচিত্র্যের একটা অংশ। ইন্ডিয়ান পেনাল কোড যাকে 'ক্রিমিনাল অফেন্স' বলেছিল, পশুমেহনের সঙ্গে তুলনা করেছিল, আসলে তা ভুল। এমনকি সমকামী মানুষেরা মানসিক ভারসাম্যহীন কিংবা বিকৃত যৌনতার অধিকারী, সে ধারনাও ভুল। লেখক আমাদের একটি ভ্রমনে নিয়ে বেড়িয়েছিলেন, যে ভ্রমণের গাইড অনিকেত। আকাশবাণীতে বহুদিন চাকরি করা স্বপ্নময় চক্রবর্তী আমাদের অনিকেতের মাধ্যমে নিয়ে গেছেন একটা সময়ে যেখানে মানুষ কিছু সংস্কার, কিছু অন্ধকার মনের মধ্যে নিয়ে বেঁচে ছিল। যেখানে আপাত স্বাভাবিক মানুষদের ভিড়ে অন্যরা লাঞ্ছনার স্বীকার হতো। অনেক রকমের মানুষই আছে। লেখক তাদের মাঝ থেকে এক ধরনের মানুষকে বেছে নিয়েছেন। অথচ এই উপন্যাস কেবল সমকামী কিংবা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষদের নিয়ে নয়। তাদের সঙ্গে সঙ্গে আছে ইতিহাস, উপকথা, পুরাণ, রূপকথা, বিজ্ঞান। এই উপন্যাস যেমন দুলাল কিংবা পরির কথা বলে, তেমনি এই উপন্যাস অনিকেত, শুক্লা, মঞ্জুর কথাও বলে। নব্বইয়ের দশক থেকে ২০১০/১১-র বদলে যাওয়া কলকাতার কথাও বলে। কিন্তু এরই মাঝে, স্বপ্নময় চক্রবর্তী মূল স্রোতে রেখেছেন দুলাল, পরি, অলোকদেড় মতো সমকামী, রুপান্তরকামী মানুষদের। স্রেফ গপ্পো নয়, লেখক বারবার তাদের মনের কথা তুলে আনতে চেয়েছেন। আমাদের বার বার মনে করিয়ে দিতে চেয়েছেন এরা আসলে আমাদেরই মতো মানুষ। সুখ দুঃখ, প্রেম ভালোবাসা, আশা আকাঙ্ক্ষা, ক্ষুধা তৃষ্ণা নিয়ে বেঁচে থাকা জীবন। ছয়শত পৃষ্ঠার এই বিশাল বইকে কয়েকটা কথায় ব্যখ্যা করে বোঝানো সম্ভব না। তবে এটুকু বলতে পারি, অনেক ভুল ধারনা ভেঙে দিতে সক্ষম এই বই। 'হলদে গোলাপ' পড়তে পড়তে কখনও শিউরে উঠতে হবে, কখনও অবাক হতে হবে, কখনও মমরে গিয়ে বিঁধবে কিছু কথা। এমন অসাধারণ একটা বইয়ের জন্য লেখককে শ্রদ্ধা জানাতেই হয়।
Thriller
1
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই-কন্ট্রাক্ট লেখক-মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন ধরন-থ্রিলার পৃষ্ঠা-৩৫০ মূল্য-২৬০ প্রকাশনী-বাতিঘর বাস্টার্ড সিরিজের ২য় বই 'কন্ট্রাক্ট'। কন্ট্রাক্ট শব্দের অর্থ, কোন কিছু নিয়ে চুক্তি। সিরিজের প্রথম বই নেমেসিসেই মূল চরিত্র বাস্টার্ড ওরফে বাবলু এবং ইন্সপেক্টর জেফরি বেগ দুজনকেই পেয়েছিলাম। প্রথম বইয়ের কাহিনীতে বাস্টার্ড এক কান্ড করে এবং দেশের বাইরে চলে যায়। সেখানে অবশ্য কারো ছত্রছায়ায় বসবাস করছিলো।কন্ট্রাক্ট এ তাকে আবার দেশে ফিরিয়ে আনা হয়। এবং চুক্তিটা মূলত বাস্টার্ডের সাথেই হয়। আর চুক্তি হল কাউকে পৃথিবী থেকে সরিয়ে দেওয়ার। আপাত দৃষ্টিতে যাকে সরিয়ে দেবার কথা বলা হয় সেও একজন ক্রিমিন্যাল। গল্পটা শুরু হয় বেশ স্বাভাবিক ভাবে একজন দূদর্ষ গুন্ডার হাত থেকে রেহায় পাবার জন্য কিছু লোক বাস্টার্ডের শরনাপন্ন হয়। বাস্টার্ডের সাথে তাদের ডিল হয়, এ কাজের বিনিময়ে সে ১ কোটি টাকা পাবে। যদিও তার মধ্যে দোলাচাল চলছিলো তবুও টাকার দিকে তাকিয়ে সে ঠিকই রাজি হয়। কিন্তু এখানে কি শুধু মাত্র একটাই উদ্দেশ্য? এত সহজ উদ্দেশ্যে কি আর থ্রিলার এগিয়ে যাবে! ব্যপারটা ধরতে বেশ কিছুক্ষন অপেক্ষা করতে হবে পাঠককে। হ্যা জেফরি বেগও আছেন। তাকেও ছুটতে হবে বাস্টার্ডের পিছু পিছু। উনার তো কাজ এটাই । তাদের সাথে পাঠকও ছোটাছোটি করবেন দেশ টু বিদেশ। এর মাঝে একজন নারী চরিত্র জুটে যেতে পারে বাস্টার্ডের জন্য। ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া, একের পর এক ষড়যন্ত্র এসকল টানাপোড়ন নিয়েই গল্প এগিয়ে যেতে থাকবে। এ গল্পে সব থেকে ভালো ছিলো দৌড়ানো। গল্পের এতো বাঁক! এসবেতো পাঠককে দৌড়তেই হবে। একেক টা মোড় হঠাৎ হঠাৎ এমন ভাবে উম্মেচন হতে থাকবে, আসলে ভাববারই বিষয় বাংলাদেশী কোন থ্রিলার পড়ছি তো! আর এসবই গল্পটাকে পাঠকের কাছে করে তুলবে বেশ উপভোগ্য। নেমেসিসে বাস্টার্ড সম্পর্কে যতোটা সংকীর্ণতা লেখক দিয়েছিলেন। কন্ট্রাক্ট এ এসে পুরো পুরি পুষিয়ে দিয়েছেন ষোল আনা। বাস্টার্ড কে, কোন জায়গা থেকে কিভাবে এসেছে, কেমন করে টিকে আছে। সব কিছুর আদোপন্ত বিবরণ লেখক দিয়ে রেখেছেন। আর জেফরি বেগ তো আছেই। তবে মূল এই দু চরিত্রের দিকেই লেখক ফোকাস করেছেন সব থেকে বেশি। বাস্টার্ডের উপর তো অবশ্যই। সে তুলনার আর বাদ বাকি চরিত্র গুলো এতো বেশি ফুটে উঠেনি। লেখক বোধহয় চাননি। আরেকটা ব্যপার এ গল্পে বাস্টার্ডকে যে লেখক এগিয়ে রাখতে চেয়েছেন এটা পাঠক প্রথমেই বুঝবেন। এমনকি গল্পে প্রবেশের ক্ষেত্রেও জেফরি বাস্টার্ডের থেকে অনেক পিছিয়ে ছিলেন। পিছিয়ে ছিলেন বললে ভুল হবে, লেখক পিছিয়ে রেখেছিলেন। বাস্টার্ডকে দিয়ে কাজ করিয়ে জেফরিকে লাগিয়ে দিয়েছিলেন বাস্টার্ডের পিছে দৌড়াতে। তবে জেফরিও কিছু সময় দেরি না করেই তার কাজে লেগে গিয়েছিল। লেখক বাস্টার্ডের প্রতি এত বেশি পক্ষপাতিত্ব করেছেন যে, জেফরির পিছু লাগার ব্যপারটা পর্যন্ত জানিয়ে দিচ্ছিলেন। তবে লেখককে দোষারূপ করে কোন লাভ নেই। পাঠক পড়ার সময়ও বাস্টার্ডের পক্ষপাতিত্বই করবে। কোন পাঠক চাইবে না, বাস্টার্ডের নাগালে পর্যন্ত জেফরি পৌছাক। তবে কতো টা সম্ভব হয়েছিলো তার জন্য তো বই ই আছে। গল্পে অনেক গুলো চরিত্র এসেছে যেমন, চলেও গেছে তোমন। তাদের কোন ছাপ থাকে নি কোথাও । নারী চরিত্রগুলোও তেমনি পানসেই ছিলো। তেমন কোন সারা পাওয়া যায়নি তাদের থেকে। লেখক অন্তত এদের আরো কিছুটা স্মার্টলি ফাস্ট দেখাতে পারতেন।বাংলাদেশী থ্রিলার, এখানে লেখক স্থানের বর্ণনা গুলো বেশ চমৎকার দিয়েছেন। লেখকের অনুবাদের হাত ভালো এটা যেমন সত্যি । নিজের বইয়ের বেলায়ও তিনি বেশ সচেতন ছিলেন। কাহিনীর বর্ণনা, বা ধারাবাহিকতা বেশ ভালো ছিলো।কাহিনীর গতি, এ্যাকশান নেবার যে সচেতনতা , রোমান্স তো কিছু ছিলোই তার ছাড়া টুইস্ট তো অবশ্যই। এবং সব কিছু ঠিক ঠিক মাত্রায় । দেশ এবং বিদেশের পটভূমি তে লেখা, এক গেয়েমি বা কোন প্রকার স্থুলতার প্রমাণ দেয় নি। এমনকি প্রথম থেকেই ছিলো টানটান উত্তেজনা। আর ভাষা ব্যবহার, সব ঠিক থাকলেও কিছু বিরক্তিকর গালির ব্যবহার না করলেও পারতেন। আবার অনেকের মতো এসব এডাল্টারি ব্যপার থ্রিলারে একটা অংশ হতে পারে। তবে এটাও ঠিক থ্রিলার আমাদের সংস্কৃতি থেকে নয়। বিদেশী সাহিত্য থেকে এসেছে। এর মধ্যে কিছুটা তো এড়ানো যাই ই, এতে আসা করি থ্রিলারের মান ক্ষুন্ন হবে না। বাকি সব সাসপেন্স ঠিক থাকলে উটকো কিছু ভাষা ব্যবহার এতে ছাপ ফেলবার কথা নয়। যদিও তার মাঝে অনুবাদের ছাপ কিছুটা ছিলো বা একটু মেকি মেকি মনে হয়েছে তবুও বাংলাদেশী থ্রিলার হিসেবে কন্ট্রাক্ট দূর্দান্ত। সব শেষে কন্ট্রাক্ট পরিভ্রমণ বেশ জুতসই ই ছিলো। রেটিং-৪.৮/৫ রকমারি লিংক- https://www.rokomari.com/book/33653/কন্ট্রাক্ট
Thriller
1
বইটি আসলেই চমৎকার।
Political
3
ছোটবেলা থেকে আমরা পড়ে আসছি, 'আগরতলা' ষড়যন্ত্র মামলা একটি মিথ্যা মামলা,যে মামলায় আসামী ছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান ও আরো ৩৪ জন বাঙ্গালি। কি সেই মামলা? তার কারণই বা কি? কি তার প্রেক্ষাপট? অভিযুক্তরা কারা? তাদের লক্ষ্য কি ছিল? কিভাবে তাদের পরিকল্পনা গোয়েন্দারা জানল? কি ঘটেছিল তাদের ভাগ্যে? কোথায় এখন তারা? শেখ মুজিব কি আসলেই জড়িত ছিলেন এতে? এই প্রশ্নগুলোর সবকটারই উত্তর দিতে বইটি একাই যথেষ্ট। বাংলাদেশের স্বাধীনতা অর্জনের পথে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা একটি যুগান্তকারী অধ্যায়- যাতে স্বাধীনতার নায়ক বঙ্গবন্ধু ছিলেন প্রত্যক্ষভাবেই সংশ্লিষ্ট। বইটি লিখেছেন- কর্নেল শওকত আলী, 'আগরতলা' মামলার ২৬নং আসামি। বর্তমানে বাংলাদেশ জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার। তিনি লিখেছেন, "দেশপ্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে সশস্ত্র পন্থায় বাংলাদেশকে স্বাধীন করার লক্ষ্যে আমরা বঙ্গবন্ধুর সম্মতি নিয়ে একটি বিপ্লবী সংস্থা গঠন করেছিলাম। আমাদের পরিকল্পনা ছিল, একটি নির্দিষ্ট সময়ে আমরা বাঙ্গালিরা বিভিন্ন গ্রুপে তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তানের সবকটি ক্যান্টনমেন্টে কমান্ডো স্টাইলে হামলা চালিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানিদের অস্ত্র কেড়ে নেব,তাদের বন্দী করব এবং বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করব।" দুর্ভাগ্যজনকভাবে, তাদের কর্মকান্ডের তথ্য গোয়েন্দা বাহিনীর কাছে পৌছালে তারা গ্রেফতার হন, পাকিস্তান সরকার এতে ভারতের সংশ্লিষ্টতা জুড়ে দিয়ে বঙ্গবন্ধুসহ ৩৫ জনের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহিতার অভিযোগ এনে 'রাষ্ট্র বনাম শেখ মুজিবুর রহমান ও অন্যান্য' শিরোনামে মামলাটি দায়ের করে; যা ইতিহাসে 'আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা' নামে পরিচিত। লেখকের মতে, "এ কথা ঠিক, তৎকালীন রাজনৈতিক অবস্থার প্রেক্ষিতে কৌশলগত কারণে বঙ্গবন্ধুসহ আমরা সবাই ট্রাইব্যুনালে নিজেদের নির্দোষ বলে দাবি করেছিলাম।তা ১৯৬৮-৬৯ সালের কথা। কিন্তু এখন তো ইতিহাস সঠিকভাবে লিপিবদ্ধ হওয়া বাঞ্ছনীয়, যার প্রেক্ষিতে ২০০১ সালে 'Armed Quest for Independent' প্রকাশিত হয়, যার বাংলা সংস্করণ হিসাবে ২০১১ সালে প্রকাশিত হয় 'সত্যমামলা আগরতলা' বইটি। প্রকাশ করেছে প্রথমা প্রকাশন। এতে রয়েছে— » বঙ্গবন্ধুও আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িত » উর্দু এবং শুধু উর্দুই » বাঙালির স্বায়ত্তশাসনের দাবি » আমার সেনাবাহিনীতে যোগদান » পাকিস্তানি সশস্ত্র বাহিনীতে বাঙালির অবস্থান » আইয়ুব খানের দশক » বঙ্গবন্ধুর ছয় দফা কর্মসূচি » গ্রেফতার ও জিজ্ঞাসাবাদ » বিচারকার্য » শেখ মুজিব বঙ্গবন্ধু হলেন » পরিশিষ্ট (ক-ছ) বইটির অনন্য কিছু বৈশিষ্ট্যের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল- এতে রয়েছে আগরতলা মামলার ফরমাল চার্জশিট,অভিযুক্তদের ছবিসহসহ পরিচিত, সাক্ষীদের পরিচিত এবং যুক্তফ্রন্টের নির্বাচনী ইশতেহারের ২১ দফার মত গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক দলিল-যা সঠিক ইতিহাস জানতে সহায়ক।
Political
3