title
stringlengths
9
97
content
stringlengths
48
3.94k
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত করে গেছেন : মোস্তাফা জব্বার
ডাক ও টেলিযোগাযোগ মন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার বলেছেন, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৯৭৩ সালে জাপান সফরের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত তৈরি করে গেছেন। পশ্চিমা দেশ বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকা থেকে শিল্প বিপ্লবের সূচনা হয় উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এশিয়া অঞ্চলে জাপান শিল্প বিপ্লবে ভূমিকা রেখে আমাদের গর্বিত করেছে। বাংলাদেশ জাপান সম্পর্ক তুলনাহীন। আমাদের অকৃত্রিম বন্ধু জাপানের কাছে শেখার অনেক কিছু আছে
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত করে গেছেন : মোস্তাফা জব্বার
আজ এক তথ্যবিবরণীতে এ কথা বলা হয়। ’মন্ত্রী শনিবার রাতে রাজধানীর ইন্টারকন্টিনেন্টাল হোটেলে জাপান-বাংলাদেশ সম্পর্কোন্নয়নে অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ হক অটোমোবাইলস লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী আবদুল হকের জাপান সম্রাটের অর্ডার অব দ্য রাইজিং সান পুরস্কার অর্জন উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তৃতায় এসব কথা বলেন।মন্ত্রী বলেন, সরকারি এবং বেসরকারি খাত, যৌথ সহযোগিতা সমৃদ্ধ জাতি গঠনে ভূমিকা রাখার ক্ষেত্রে আবদুল হক অনুকরণীয় দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। কম্পিউটারের ওপর থেকে ১৯৯৮-৯৯ অর্থবছরে ভ্যাট-ট্যাক্স প্রত্যাহারে তৎকালীন এফবিসিসিআই নেতা আবদুল হকের ভূমিকা গভীর কৃতজ্ঞতার সাথে স্মরণ করেন মন্ত্রী
বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ-জাপান সম্পর্কের ভিত করে গেছেন : মোস্তাফা জব্বার
অনুষ্ঠানে বাংলাদেশে জাপানের রাষ্টদূত ইতো নাওকি প্রধান অতিথি ছিলেন। এতে প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান এবং বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমানও বক্তৃতা করেন।১৯৭৩ সালে বঙ্গবন্ধুর জাপান সফরকে দুই দেশের সম্পর্কোন্নয়নে ঐতিহাসিক ভূমিকার কথা তুলে ধরে রাষ্ট্রদূত নাওকি বলেন, এরই ধারাবাহিকতায় জাপান নারায়ণগঞ্জের আড়াই হাজার থানায় জাপানি ইপিজেড প্রতিষ্ঠা করেছে। এর মাধ্যমে বাংলাদেশে জাপানি বিনিয়োগ আরো এক ধাপ এগিয়ে গেছে। এ দেশে জাপানি বিনিয়োগের নতুন ক্ষেত্র তৈরি হয়েছে।
ই-মেইলে দেশে ফেরার আকুতি ভারতে আটকে পড়া জেলেদের
ই-মেইল পাঠিয়ে দেশে ফেরার আকুতি জানিয়েছেন গত ১৯ আগস্ট বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়া নিখোঁজ ১৬ জেলে। বর্তমান তারা ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার জীবনতলা থানা এলাকার এক ভারতীয় নাগরিকের আশ্রয়ে রয়েছেন।নিখোঁজ ১৬ জেলেকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আয়োজিত এক মানববন্ধনে এসব তথ্য জানান বাংলাদেশ উপকূলীয় মৎস্য ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি আনোয়ার হোসেন সিকদার।মানববন্ধনে তিনি জানান, ১৯ আগস্ট বাংলাদেশি ট্রলার এফবি সামিরা সাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে
ই-মেইলে দেশে ফেরার আকুতি ভারতে আটকে পড়া জেলেদের
ঝড়ে ট্রলারের এক জেলে নিহত হন। বাকি ১০ জন অন্য একটি বোটের পাঁচ জেলেসহ সাঁতরে ভারতের দক্ষিণ চব্বিশ পরগণা জেলার জীবনতলা থানাধীন দক্ষিণ মাউখালীর উপকূলে ওঠেন। সেখানে বাংলাদেশি জেলেদের আশ্র‍য় দেন স্থানীয় বাসিন্দা জীবন মোল্লা।মানববন্ধনে আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘জীবন মোল্লা আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন
ই-মেইলে দেশে ফেরার আকুতি ভারতে আটকে পড়া জেলেদের
তার মোবাইলের মাধ্যমে আমি জেলেদের সঙ্গে কথা বলেছি। ই-মেইলের মাধ্যমে জীবন মোল্লা বাংলাদশি জেলেদের নাম-ঠিকানা পাঠিয়েছেন। আমাদের জেলেরা দেশে ফেরার জন্য আকুল হয়ে আছেন। ’তিনি আরো বলেন, ‘ঝড়ের কবলে পড়া আরো অনেক জেলে ভারতের বিভিন্ন কারাগারে আটক রয়েছেন
ই-মেইলে দেশে ফেরার আকুতি ভারতে আটকে পড়া জেলেদের
তাদের ফিরিয়ে আনার দাবি জানাই। ’ভারতে আটকে পড়া জেলেদের দ্রুত দেশে ফিরিয়ে আনার আবেদন জানিয়ে গতকাল পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে বাংলাদেশ উপকূলীয় মৎস্য ট্রলার শ্রমিক ইউনিয়ন। ২৫ আগস্টের মধ্যে যথাযথ পদক্ষেপ না গ্রহণ করলে ২৬ আগস্ট পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সামনে অবস্থান গ্রহণের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন ইউনিয়নটির নেতারা।উল্লেখ্য, গত ১৯ আগস্ট ভোররাত থেকে বিকেল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত উত্তাল ছিল বঙ্গোপসাগর। এদিন সাগরে সৃষ্ট ঝড়ের কবলে পড়ে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের কচিখালীসংলগ্ন সাগরের পক্ষীদিয়া, আমবাড়িয়া ও দুবলা চরসংলগ্ন সমুদ্রে মাছ আহরণকারী জেলে ট্রলারগুলো। এ ঘটনায় অন্তত ১৯ জেলে নিখোঁজ ঘটনা নিশ্চিত হওয়া গেছে।
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে নবনির্বাচিত ডেপুটি স্পিকারের শ্রদ্ধা
গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সমাধি সৌধ বেদিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পিকার মোঃ শাসুল হক টুকু। গতকাল শনিবার শ্রদ্ধা নিবেদনকালে বঙ্গবন্ধু ও তাঁর পরিবারের শহীদ সদস্যদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও বিশেষ মোনাজাতে অংশ নেন তিনি।এসময় সংসদ সদস্য সুলতান মোঃ মুনসুর, মনোরঞ্জন শীল গোপাল,হাবিবুর রহমান,এ্যারমা দত্ত,রওশন আরা মান্নান, শিউলী আজাদ,বাসন্তি চাকমা ও অপরাজিতা হক এবং গোপালগঞ্জ ও পাবনার বেড়া ও সাথীয়া উপজেলা আওয়ামীলীগের সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।ডেপুটি স্পিকার বলেন, বঙ্গবন্ধুর হত্যাকান্ডটি ছিল বাঙ্গালী জাতিকে হত্যা করার সামিল
বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে নবনির্বাচিত ডেপুটি স্পিকারের শ্রদ্ধা
এ হত্যাকান্ডটি ছিল মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে বিনাশ করার লক্ষ্য। বাংলাদেশে এখনো ষড়যন্ত্র চলছে। এ ষড়যন্ত্রকে মোকাবেলা করতে মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল বাঙ্গালীকে একত্রিত হবার আহ্বান জানান তিনি।ডেপুটি স্পিকার আরো বলেন, সরকারি দল, বিরোধী দলসহ সকল দলের সংসদ সদস্যরা মন খুলে কথা বলছেন। দেশের সংবিধান দিয়েছেন বঙ্গবন্ধু। সংবিধান ও কার্যপ্রণালী বিধি অনুযায়ী সংসদ সদস্যদের পরিচালনা করা আমাদের দায়িত্ব।
রাজধানীর যেসব মার্কেট ও দোকানপাট বন্ধ থাকবে আজ
কেনাকাটা আমাদের জীবনের নিত্যপ্রয়োজনীয় অংশ। দৈনন্দিন প্রয়োজনে আমাদের সবাইকে কমবেশি মার্কেটে যেতেই হয়। তবে রাজধানীতে নির্দিষ্ট কিছু দিনে কিছু মার্কেট বন্ধ থাকে। তাই সেগুলো সম্পর্কে জেনে রাখলে আমাদের জন্য সুবিধা হবে। যেসব এলাকার দোকানপাট বন্ধ: আগারগাঁও, তালতলা, শেরেবাংলানগর, শেওড়াপাড়া, কাজীপাড়া, পল্লবী, মিরপুর-১০, মিরপুর-১১, মিরপুর-১২, মিরপুর-১৩, মিরপুর-১৪, ইব্রাহীমপুর, কচুক্ষেত, কাফরুল, মহাখালী, নিউ ডিওএইচএস, ওল্ড ডিওএইচএস, কাকলী, তেজগাঁও ওল্ড এয়ারপোর্ট এরিয়া, তেজগাঁও ইন্ডাস্ট্রিয়াল এরিয়া, ক্যান্টনমেন্ট, গুলশান-১, ২, বনানী, মহাখালী কমার্শিয়াল এরিয়া, নাখালপাড়া, মহাখালী ইন্টারসিটি বাস টার্মিনাল এরিয়া, রামপুরা, বনশ্রী, খিলগাঁও, গোড়ান, মালিবাগের একাংশ, বাসাবো, ধলপুর, সায়েদাবাদ, মাদারটেক, মুগদা, কমলাপুরের একাংশ, যাত্রাবাড়ীর একাংশ, শনির আখড়া, দনিয়া, রায়েরবাগ, সানারপাড়।বন্ধ থাকবে যেসব মার্কেট: বিসিএস কম্পিউটার সিটি (আইডিবি), পল্লবী সুপার মার্কেট, মিরপুর বেনারসী পল্লী, ইব্রাহীমপুর বাজার, রজনীগন্ধা মার্কেট, ইউএই মৈত্রী কমপ্লেক্স, বনানী সুপার মার্কেট, ডিসিসি মার্কেট গুলশান-১ এবং ২, গুলশান পিংক সিটি, মোল্লা টাওয়ার, আল-আমিন সুপার মার্কেট, রামপুরা সুপার মার্কেট, মালিবাগ সুপার মার্কেট, তালতলা সিটি করপোরেশন মার্কেট, কমলাপুর স্টেডিয়াম মার্কেট, গোরান বাজার, আবেদিন টাওয়ার, ঢাকা শপিং সেন্টার, আয়েশা মোশারফ শপিং কমপ্লেক্স, মিতালী অ্যান্ড ফ্রেন্ড সুপার মার্কেট।
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
দেশে অবৈধ ও অনিবন্ধিত হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংকগুলো বন্ধে দ্বিতীয় দফার চলমান অভিযানে আরো ৮৫০টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। অভিযান শুরুর প্রথম ৯৬ ঘণ্টায় এসব প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেওয়া হয়। এই সময়ে দুজনকে গ্রেপ্তার এবং ১৬ লাখ ৯৬ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এই অভিযানে সবচেয়ে বেশি ১৯৪টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়েছে চট্টগ্রাম বিভাগে
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
গতকাল শনিবার স্বাস্থ্য অধিদপ্তর থেকে এ তথ্য পাওয়া যায়। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, গত সোমবার অভিযান শুরু হয়। বৃহস্পতিবার পর্যন্ত ৮৫০টি হাসপাতাল, ক্লিনিক, ডায়াগনস্টিক সেন্টার ও ব্লাড ব্যাংক বন্ধ করা হয়েছে। শুক্র ও শনিবারের অভিযানে এ সংখ্যা আরো বেড়েছে
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
এর আগে গত মে মাসের শেষ দিকে প্রথম দফার অভিযানে সর্বমোট এক হাজার ৬৪১টি প্রতিষ্ঠান বন্ধ করা হয়। জরিমানা করা হয় ২৫ কোটি ১৮ লাখ ৫২ হাজার ৮৬৭ টাকা।গতবারের মতো এবারের অভিযানেও বেসরকারি হাসপাতাল, ক্লিনিকগুলোতে অব্যবস্থাপনার নানা তথ্য প্রকাশিত হচ্ছে। গতকাল কুমিল্লার একটি হাসপাতালে অস্ত্রোপচার কক্ষের যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সংরক্ষণের ফ্রিজে গরুর মাংস পাওয়া যায়
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
এবারের এ অভিযান কত দিন চলবে—প্রশ্নে স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক ডা. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশীদ আলম গতকাল কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘অবৈধ হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ আমাদের নিয়মিত কাজের একটি অংশ। করোনা মহামারির কারণে এ কাজ তেমনভাবে করা যায়নি। এ কারণে বিশেষ অভিযান চালানো হচ্ছে। এটা নিয়মিত কাজ হিসেবেই চলমান থাকবে
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
’গত বুধবার আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) তাদের এক গবেষণার ফল থেকে জানায়, দেশে মাত্র ৬ শতাংশ বেসরকারি ক্লিনিক ও হাসপাতালের লাইসেন্স আছে। এ ধরনের ৩৫ শতাংশ বেসরকারি প্রতিষ্ঠান চলছে নিবন্ধন ছাড়াই, এমনকি তারা নিবন্ধনের আবেদনই করেনি। বাকি ৫৯ শতাংশ প্রতিষ্ঠান নিবন্ধন নবায়ন করেনি অথবা নিবন্ধনের জন্য নতুন করে আবেদন করেছে।অস্ত্রোপচার কক্ষের ফ্রিজে গরুর মাংস, নেই ডাক্তার-নার্স :গতকাল কুমিল্লা নগরীর তিনটি বেসরকারি হাসপাতালে অভিযান চালায় জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের একটি দল
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
এর মধ্যে নগরীর চকবাজারের তেলিকোনা এলাকায় অবস্থিত নিবেদিতা হাসপাতালের অস্ত্রোপচার কক্ষের যন্ত্রপাতি ও ওষুধ সংরক্ষণের ফ্রিজে গরুর মাংস দেখতে পাওয়া যায়। অভিযানকালে কোনো চিকিৎসক বা নার্সকে এ হাসপাতালে পাওয়া যায়নি। হাসপাতালটিতে ভর্তি ছিলেন সদ্য অস্ত্রোপচার হওয়া একজন রোগী। তবে তাঁকে ২৪ ঘণ্টায়ও দেখতে আসেননি কোনো চিকিৎসক বা নার্স
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
হাসপাতালটির অবস্থাও ছিল নাজুক। ছিল না বর্জ্য ব্যবস্থাপনা। রোগীর সংখ্যা কম থাকলেও তারা পায় না চাহিদা অনুযায়ী সেবা। এমন অব্যবস্থাপনার কারণে নিবেদিতা হাসপাতালটি সিলগালা করে দেওয়া হয়েছে
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
গতকাল দুপুরে ওই হাসপাতালটিতে অভিযান পরিচালনা করা হয়েছে বলে জানান সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার (সমন্বয়ক) আবদুল্লাহ আল সাকী। তিনি বলেন, ‘আমরা শনিবার নগরীর তিনটি হাসপাতালে অভিযান চালিয়েছি। দুটি হাসপাতালে সামান্য ত্রুটি ছিল, তাদের সতর্ক করা হয়েছে। তবে নিবেদিতা হাসপাতালের অবস্থা খুবই করুণ
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
রোগীরা অভিযোগ করেছে, হাসপাতালটিতে একজন ম্যানেজার আছেন। ওই ম্যানেজারই ডাক্তার আবার তিনিই নার্স। অপারেশনও করেন তিনি। ’অভিযানকালে উপস্থিত থাকা জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের মেডিক্যাল অফিসার ডা. কেয়া রানী বলেন, ‘ওই হাসপাতালের ফ্রিজে গরুর মাংস দেখেছি
অবৈধ হাসপাতাল-ক্লিনিকসহ ৮৫০ প্রতিষ্ঠান বন্ধ
ফ্রিজটি যদিও থিয়েটারের বাইরে; কিন্তু অপারেশনের সময় সেটি ভেতরে নেওয়া হতো। ওই ফ্রিজেই অপারেশনের ওষুধ ও যন্ত্রপাতি রাখা ছিল। ফ্রিজটির নিচের অংশে যন্ত্রপাতি ও ওপরের অংশে মাংস ছিল। এতে রোগ-জীবাণু ছড়িয়ে পড়াটাই স্বাভাবিক। তাই আমরা হাসপাতালটি পুরোপুরি বন্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। ’
আবার ডাকা হবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে!
মিয়ানমার থেকে ছোড়া গোলা আবারও বাংলাদেশে এসে পড়েছে। সীমান্তের ওপারে মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্যে গতকাল শনিবার সকাল থেকে তুমুল লড়াইয়ের খবর পাওয়া গেছে। সেখানে মিয়ানমার বাহিনীর অভিযানে হেলিকপ্টারের সঙ্গে অংশ নিচ্ছে যুদ্ধবিমানও। সেগুলোর কোনো একটি থেকে ছোড়া দুটি গোলা গতকাল বাংলাদেশ ভূখণ্ডে এসে পড়ে
আবার ডাকা হবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে!
এদিকে ঢাকার একজন কর্মকর্তা বলেছেন, সীমান্ত এলাকায় মিয়ানমার বাহিনীর অভিযানের পরিপ্রেক্ষিতে নিরাপত্তা আরো জোরদার করা হয়েছে। পররাষ্ট্রমন্ত্রী এ কে আব্দুল মোমেন বলেছেন, মিয়ানমারের আর কোনো নাগরিককে বাংলাদেশে ঢুকতে দেওয়া হবে না।পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মো. শাহিরয়ার আলম বলেছেন, সীমান্তে উসকানির প্রতিবাদ জানাতে আজ রবিবার ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূত অং কিউ মোয়েকে তলব করবে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।এর আগে গত ২০ ও ২৮ আগস্ট মিয়ানমার থেকে মর্টারের গোলা বাংলাদেশে এসে পড়েছিল
আবার ডাকা হবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে!
সে সময় ঢাকায় মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে দুই দফায় তলব করে প্রতিবাদ জানিয়েছিল বাংলাদেশ। আজ তৃতীয়বারের মতো রাষ্ট্রদূতকে তলব করা হচ্ছে। মিয়ানমার সীমান্ত থেকে পাওয়া খবরে জানা গেছে, গত সপ্তাহ ধরে মিয়ানমারের বিদ্রোহী ‘আরাকান আর্মির (এএ)’ সঙ্গে মিয়ানমারের সেনা ও সীমান্তরক্ষী বাহিনীর মধ্যে সংঘর্ষ চলছে।এরই ধারাবাহিকতায় গতকাল শনিবার সকাল ৯টা থেকে সকাল ১১টা পর্যন্ত সীমান্তবর্তী মিয়ানমারের আকাশ থেকে অনেক গোলাবর্ষণ করা হয়েছে
আবার ডাকা হবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে!
বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি উপজেলার ঘুনধুম এলাকায় দুটি গোলা এসে বাংলাদেশের ভেতরে পড়লে স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। তবে যেখানে গোলা পড়েছে সেই এলাকায় পাহাড় ও জঙ্গল রয়েছে। সেখানে লোকজনের উপস্থিতি তখন ছিল না।বান্দরবানের পুলিশ সুপার (এসপি) তারিকুল ইসলাম তারিক বলেন, আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা বাহিনী এ বিষয়ে সতর্ক অবস্থায় আছে
আবার ডাকা হবে মিয়ানমারের রাষ্ট্রদূতকে!
সেখানে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।ঘুনধুম ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাহাঙ্গীর আজিজ কালের কণ্ঠকে গতকাল বিকেলে বলেন, ‘মিয়ানমারের যুদ্ধবিমান থেকে ছোড়া গোলা আমার ইউনিয়ন এলাকায় এসে পড়লেও ভাগ্য ভালো তখন সেখানে কোনো লোকজন ছিল না। সীমান্তবর্তী আমার ইউনিয়নে প্রায় ৩০ হাজার লোকের বসবাস। এখন আমরা সবাই আতঙ্কিত সময় পার করছি। ’ ঘুনধুম ইউনিয়নের গ্রাম পুলিশ আবদুল জব্বার বিকেল ৫টার দিকে কালের কণ্ঠকে জানান, ‘আমি এখন সীমান্তে অবস্থান করছি। আমাদের সীমান্তের পাশে আকাশে দুটি হেলিকপ্টার ঘুরছে। ’
আমরা আপনাদের কাউকে হত্যা করিনি : কাদের
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘মির্জা ফখরুলকে সতর্ক করে দিতে চাই, আপনাদের হাতে রক্তের অনেক দাগ। আমরা আপনাদের কাউকে হত্যা করিনি। হত্যা ও ষড়যন্ত্রের রাজনীতিতে আমরা বিশ্বাস করি না। ’গতকাল শনিবার রাজধানীর কৃষিবিদ ইনস্টিটিউশনে ছাত্রলীগের সম্মিলিত বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সম্মেলনে সেতুমন্ত্রী এসব কথা বলেন
আমরা আপনাদের কাউকে হত্যা করিনি : কাদের
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপির আন্দোলন মানেই নিজেরা নিজেরা মারামারি, চেয়ার ছোড়াছুড়ি। বিএনপি নেতাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সরকার হটাবেন? দেখি না জনগণ সাড়া দেয় কি না! এখনো কোথাও জনগণ সাড়া দেয়নি। জনগণ কারো সঙ্গে মারামারি করে না। আপনাদের আন্দোলন মানে হচ্ছে নিজেরা নিজেরা মারামারি, চেয়ার ছোড়াছুড়ি। আপনাদের বিক্ষোভ মানেই পুলিশের ওপর হামলা। ’
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
এই লেখা যখন পাঠকের হাতে যাবে তার পরদিনই বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা চার দিনের ভারতের রাজধানী দিল্লি সফরে যাওয়ার কথা রয়েছে। ২০১৯ সালের পর এই প্রথম শেখ হাসিনা দিল্লি সফর করছেন। ২০১৯ সালের সফরটি ছিল মূলত ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরামে যোগ দেওয়ার জন্য। সঠিক অর্থে সেটি কোনো রাষ্ট্রীয় সফর না হলেও দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী ও সিনিয়র কর্মকর্তাদের মধ্যে বেশ কিছু দ্বিপক্ষীয় বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
তবে সেই সফরের সময় বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীকে দিল্লির বিমানবন্দরে সঠিক প্রটোকল মেনে সম্মান জানানো হয়নি বলে অনেকে মনে করেন। শেখ হাসিনাকে বিমানবন্দরে একজন জুনিয়র মন্ত্রী অভ্যর্থনা জানিয়েছিলেন, যা অনেকের কাছে দৃষ্টিকটু ঠেকেছে। তবে এবার সরকারি প্রেস নোটে জানানো হয়েছে, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি নিজে শেখ হাসিনাকে অভ্যর্থনা জানাবেন এবং তাঁকে পূর্ণ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় আনুষ্ঠানিক গার্ড অব অনার দেওয়া হবে।বাংলাদেশ ও ভারত দুটি প্রতিবেশী রাষ্ট্র
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
এই দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রের প্রধানমন্ত্রী ছাড়াও যখন দুই দেশের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকও হয়, তখন তা বেশ কিছুটা বাড়তি গুরুত্ব পায়, যার অন্যতম কারণ এই দুটি দেশ শুধু যে প্রতিবেশী তা-ই নয়, এই দুটি দেশের মধ্যে বেশ কিছু অভিন্ন রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রয়েছে। তার সঙ্গে আছে বেশ কিছু দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত অমীমাংসিত সমস্যা, যার মধ্যে দুই দেশের ভেতর দিয়ে প্রবহমান কিছু অভিন্ন নদীর পানিবণ্টন, যার মধ্যে তিস্তার পানিবণ্টনের বিষয়টি ঝুলে আছে কয়েক দশক ধরে। প্রতিবারই যখন এক দেশের উঁচু পর্যায়ের কোনো কর্মকর্তা অন্য দেশ সফর করেন, মানুষের মনে আশা জাগে এবার বুঝি এই সমস্যার সমাধানের পথ খুলল। শেষতক তেমন কিছুই হয় না
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
বাংলাদেশের মানুষ আবার হতাশ হয়।গত ৫০ বছরে উভয় দেশের সরকারপ্রধানরা একাধিকবার বৈঠক করেছেন এবং উভয় পক্ষের সদিচ্ছার কারণে দীর্ঘদিন জমে থাকা অনেক কঠিন সমস্যারও সহজ সমাধান হয়েছে। এই দুই দেশের বেশির ভাগ সমস্যার উৎপত্তি ১৯৪৭ সালে দেশভাগের নামে যখন বাংলা ভাগ হলো। বাংলা ভাগ কতটুকু যৌক্তিক ছিল সেই বিতর্ক এখনো চলছে
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
তবে ইতিহাসকে তো আর পেছনে নিয়ে যাওয়া যায় না। তদানীন্তন পশ্চিম পাকিস্তানেও পানিবণ্টন বিষয়ে বড় ধরনের সমস্যা ছিল। ১৯৬০ সালে এক চুক্তির বলে এই সমস্যার সমাধান হয়েছে (Indus Water Treaty)। এই সমস্যার সমাধান না হলে করাচি বন্দর অনেকটা অচল হয়ে যেত
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
একটি বিস্তীর্ণ এলাকা মরুভূমিতে পরিণত হতো। কিন্তু বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর আগে থেকেই ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের যেসব অমীমাংসিত সমস্যা রয়ে গিয়েছিল, সেসবের কোনোটিরই সমাধান করার চেষ্টা করা হয়নি। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকেই দুই দেশের মধ্যে অমীমাংসিত সমস্যাগুলো সমাধানের দিকে নজর দেওয়া শুরু হয়। ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান আর ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধীর মধ্যে ২৫ বছরমেয়াদি এক মৈত্রী, সহযোগিতা ও শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয় এবং একই সঙ্গে অভিন্ন নদী কমিশন প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়, যার লক্ষ্য হচ্ছে দুই দেশের ভেতর দিয়ে প্রবহমান অভিন্ন নদীগুলোর পানিবণ্টন যেন সুষ্ঠু ও ন্যায্যতার ভিত্তিতে হয়
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
এ সিদ্ধান্তও হয় যে দুই দেশ একসঙ্গে পানিসম্পদের ব্যবহার এবং বন্যা, ঘূর্ণিঝড়সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবেলায় কাজ করবে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর সামরিক শাসক জিয়া ক্ষমতা দখল করলে তাঁর পররাষ্ট্রনীতির মূলমন্ত্রই ছিল ভারতবিরোধিতা। তখন থেকেই বলা হয়ে থাকে, এই ২৫ বছরের মৈত্রী চুক্তি হচ্ছে একটি গোলামি চুক্তি। মজার ব্যাপার হচ্ছে, এই তথাকথিত গোলামির চুক্তি বাতিল করার সাহস বিএনপির কখনো হয়নি
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
১৯৭৪ সালে বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে অন্য আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যাতে বলা হয় ভারতের গঙ্গার উজানে ফারাক্কা বাঁধ চালু হওয়ার আগে দুই দেশের মধ্যে ন্যায্যতার ভিত্তিতে গঙ্গার পানিবণ্টন সমস্যারও সমাধান হবে। অন্তর্বর্তীকালীন ব্যবস্থা হিসেবে আরো সিদ্ধান্ত হয়, চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত না হওয়া পর্যন্ত ভারত কয়েকটি সংযোগ খাল চালু করতে পারবে। ১৯৭৪ সালে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব ও শ্রীমতি ইন্দিরা গান্ধী এই মর্মে একমত হয়েছিলেন যে দুই দেশের মধ্যে যেসব ছিটমহলের অবস্থান সেই ১৯৪৭ সাল থেকে একটি মানবিক বিপর্যয়ের পরিস্থিতির সৃষ্টি করেছিল, সেসব সমস্যার দ্রুত সমাধান খুঁজে বের করবে দুই দেশ। এই চুক্তিতে আরো ছিল, দুই দেশ তাদের সীমান্ত চূড়ান্তভাবে চিহ্নিত করবে
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
যেহেতু চুক্তিটি ছিল দুই দেশের ভূমির আদান-প্রদান, সেহেতু এই চুক্তির ব্যাপারে উভয় দেশের জাতীয় সংসদের অনুমোদন নিতে হয়। বঙ্গবন্ধু এই চুক্তিটি ১৯৭৪ সালেই সংসদে উত্থাপন করে তা পাস করিয়ে নেন। কিন্তু ১৯৭৫ সালে তাঁকে হত্যা করার পর এ বিষয়টির আর কোনো অগ্রগতি হয়নি। অপেক্ষা করতে হয়েছে বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার ক্ষমতা গ্রহণ পর্যন্ত
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
২০১৫ সালে ভারত তাদের সংসদের উভয় কক্ষে ১৯৭৪ সালের মুজিব-ইন্দিরা চুুক্তিটা পাস করায় উভয় দেশের ছিটমহলবাসীর দীর্ঘদিনের অমানবিক সমস্যার সমাধান হয়। এটি সমাধান সম্ভব হয়েছিল উভয় দেশের শীর্ষ নেতাদের সদিচ্ছার কারণে।বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর ভারতের উত্তর-পূর্ব সীমান্তের রাজ্যগুলোতে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআইয়ের কার্যকলাপ বেড়ে যায় কয়েক গুণ। তাদের সহায়তায় ভারতের এই অঞ্চলের বিচ্ছিন্নতাবাদীরা রাষ্ট্রীয় পৃষ্ঠপোষকতা পেতে থাকে বিভিন্নভাবে
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
চারদলীয় জোট সরকারের আমলে চট্টগ্রামে আটক ১০ ট্রাক অস্ত্রের গন্তব্য ছিল এসব বিচ্ছিন্নবাদী দলের কাছে। খালেদা জিয়ার একজন সিনিয়র মন্ত্রী সংসদে দাঁড়িয়ে বলেছিলেন, এসব বিচ্ছিন্নতাবাদী দলকে নৈতিক সহায়তা দেওয়া তাদের কর্তব্য, যেমনভাবে ভারত আমাদের মুক্তিযুদ্ধে সহায়তা দিয়েছিল। আমাদের মুক্তিযুদ্ধটাকে সেই মন্ত্রী একটি বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের পর্যায়ে নিয়ে এসেছিলেন। বিচ্ছিন্নতাবাদী সন্ত্রাসীদের এসব অপতৎপরতা একমাত্র শেখ হাসিনার সরকারই থামাতে সফল হয়েছিল
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
বাংলাদেশে অবস্থানকারী কয়েকজন বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতাকে ভারত সরকারের হাতে তুলেও দেওয়া হয়েছিল।ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে সড়ক, রেল ও জলপথ আগের যেকোনো সময়ের তুলনায় বহুগুণ বেড়েছে। চট্টগ্রাম ও মোংলা বন্দর ব্যবহার করে ভারতীয় পণ্য বাংলাদেশের ওপর দিয়ে আসাম ও অন্যান্য রাজ্যে গেছে। আশুগঞ্জ নৌবন্দর ত্রিপুরা প্রয়োজনে যেকোনো সময় ব্যবহার করতে পারে
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
একাধিক রেলপথ আবার চালু হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যে আখাউড়া-আগরতলা রেলপথ চালু হবে বলে আশা করা যাচ্ছে। কয়েক সপ্তাহের মধ্যে চট্টগ্রাম-আগরতলা বিমান চলাচলও শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। এরই মধ্যে দুই দেশের মধ্যে একাধিক সীমান্ত বন্দর বা পথ চালু হয়েছে
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
কিন্তু পরিতাপের বিষয়, ভারত এ পর্যন্ত তাদের কয়েক কিলোমিটার করিডর দিয়ে নেপাল ও ভুটানকে বাংলাদেশের চট্টগ্রাম বা মোংলা বন্দর ব্যবহারের ট্রানজিট সুবিধা দিতে নারাজ। ভারত হয়তো বুঝতে পারছে না তার পূর্বাঞ্চলীয় দেশগুলোর সঙ্গে যোগাযোগব্যবস্থার বাধাহীন উন্নয়নের সুযোগ দিলে এই অঞ্চলের বাণিজ্যের পরিমাণ প্রায় শতগুণ বাড়তে পারে।এই মুহূর্তে দুই দেশের মধ্যে সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক বিষয় হচ্ছে, তিস্তার পানিবণ্টন চুক্তি না হওয়া। এর ফলে বছরের পর বছর মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বাংলাদেশ
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
শেখ হাসিনার এই যাত্রায় এ সমস্যার সমাধান হবে তার কোনো ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে না। বলা যেতে পারে, এই সমস্যা সমাধানের পেছনে একমাত্র অন্তরায় পশ্চিম বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ২০১১ সালে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ড. মনমোহন সিং বাংলাদেশ সফরকালে এটি নিশ্চিত ছিল তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হচ্ছে। কিন্তু শেষ মুহূর্তে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বেঁকে বসায় তা আর হয়ে ওঠেনি
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
সে সমস্যা সমাধান এখনো সুদূরপরাহত মনে হচ্ছে; যদিও ভারতের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাঁর প্রথম মেয়াদেই বলেছিলেন, সেই মেয়াদেই সেই সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে। তাঁর এখন দ্বিতীয় মেয়াদ চলছে। এখনো এই সমস্যা সমাধানের কোনো আলামত দেখা যাচ্ছে না। ভারতের ফেডারেল কাঠামোয় সংশ্লিষ্ট রাজ্যকে বাদ দিয়ে এ ধরনের চুক্তি সম্ভব নয়
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
শেখ হাসিনা সুযোগ পেলেই এই বিষয় নিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে কথা বলেছেন; কিন্তু পরিস্থিতির কোনো হেরফের হয়নি। এবারের দিল্লি সফরের সময় তিনি মমতার সঙ্গে কথা বলার আগ্রহ প্রকাশ করেছেন; কিন্তু এ পর্যন্ত তেমন কোনো সাড়া পাওয়া যায়নি।শেখ হাসিনার দিল্লি সফরের সময় আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, নিরাপত্তা আর প্রতিরক্ষা ইস্যুগুলো গুরুত্ব পাবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। কিন্তু কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশের পার্শ্ববর্তী দেশ মিয়ানমারের চণ্ডনীতি দমনে বিশ্বসম্প্রদায় যেভাবে ব্যর্থ হয়েছে, তাতে এই অলোচ্য বিষয়গুলোর তাৎপর্যই বা কী? আরো পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, বাংলাদেশের তিন বন্ধুরাষ্ট্র চীন, রাশিয়া ও ভারত মিয়ানমারের সামরিক জান্তা কর্তৃক সৃষ্ট নানা ধরনের মানবিক বিপর্যয়কে পরোক্ষ ও প্রত্যক্ষভাবে সহায়তা বা সমর্থন করছে অথবা এসব বিষয়ে তারা নির্লিপ্ত থেকেছে
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
ভারতকে মনে রাখতে হবে, বাংলাদেশ শুধু তাদের স্বাভাবিক বন্ধুপ্রতিম রাষ্ট্রই নয়, কৌশলগত মিত্রও বটে। সেই সম্পর্কের উন্নতি ঘটে শুধু বাংলাদেশের সরকারে যখন আওয়ামী লীগ থাকে। অন্য কেউ থাকলে এই সম্পর্কের দ্রুত অবনতি হয়। অতীত অভিজ্ঞতা তাই বলে
প্রধানমন্ত্রীর দিল্লি সফর যেন শুধু আনুষ্ঠানিকতা না হয়
ধারণা করা যেতে পারে, বাংলাদেশে আগামী নির্বাচনের আগে শেখ হাসিনার এটাই শেষ দিল্লি সফর। এখন দেখার পালা, দিল্লি কতটুকু উদার হতে পারে। এ ব্যাপারে বাংলাদেশ এখনো দিল্লি থেকে এগিয়ে আছে।লেখক : বিশ্লেষক ও গবেষক
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
বর্তমান বাজারমূল্যের ঊর্ধ্বগতি বিবেচনায় নিয়ে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সিপিডি এক প্রতিবেদনে বলেছে, বৈশ্বিক মূল্যস্ফীতি গরিব মানুষকে বেশ চাপে ফেলে দিয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রীর অভাবে মানুষের জীবনে নেমে আসতে পারে অনাহার ও পুষ্টিহীনতা। ফলে নানা রকম জটিল ব্যাধির প্রকোপ বাড়তে পারে। এ আশঙ্কা থেকে উত্তরণের জন্য নিত্যপণ্যের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করাই রাষ্ট্রের জন্য বর্তমান সময়ের সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির ফলে নিম্ন আয়ের মানুষের দৈনন্দিন আমিষের চাহিদা পূরণ যেমন কঠিন হয়েছে, তেমনি প্রতি বেলায় পেট ভরে ভাত খাওয়াও অনেকে কমিয়ে দিয়েছে। অনেকে ভর্তা ভাত দিয়েই দৈনন্দিন খাদ্য চাহিদা মিটিয়ে ফেলতে বাধ্য হচ্ছে।জাতিসংঘের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান—খাদ্য ও কৃষি সংস্থা (এফএও), আন্তর্জাতিক কৃষি উন্নয়ন সংস্থা (ইফাদ), ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচি (ডাব্লিউএফপি) ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা কর্তৃক যৌথভাবে আয়োজিত ‘বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা ও পুষ্টি পরিস্থিতি’ শীর্ষক সাম্প্রতিক গবেষণা প্রতিবেদন অনুসারে বাংলাদেশের ৭৩ শতাংশ মানুষের পুষ্টিকর খাবার কিনে খাওয়ার সামর্থ্য নেই। দেশের মোট জনসংখ্যার ৩২ শতাংশ মানুষ মাঝারি থেকে গুরুতর খাদ্য অনিশ্চয়তায় রয়েছে
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, বাংলাদেশে পাঁচ বছরের কম বয়সী ১০ শতাংশ শিশু কৃশকায়। অর্থাৎ এরা তীব্র অপুষ্টির শিকার। পাশাপাশি একই বয়সী ৩০ শতাংশ শিশু খর্বকায় অর্থাৎ বয়সের তুলনায় এদের উচ্চতা কম। অন্যদিকে ২ শতাংশের বেশি শিশুর ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
দীর্ঘস্থায়ী অপুষ্টির পরিণতি হচ্ছে বয়সের তুলনায় কম উচ্চতা। প্রতিবেদনে নারীদের পুষ্টি পরিস্থিতির অবনতির কথাও বলা হয়েছে। বর্তমানে দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধ এ পরিস্থিতিকে আরো খারাপ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে বলে পুষ্টিবিদরা মনে করছেন।খাদ্যদ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির ফলে মানুষের দৈনন্দিন সুষম খাদ্যের চাহিদা পূরণ করা সম্ভব হচ্ছে না
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
কারণ দাম বাড়লেও দিনমজুর, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণির মানুষের আয় আগের মতোই আছে। ফলে তাদের জীবনমানের পরিবর্তন ঘটেছে, সঙ্গে পরিবর্তন ঘটেছে খাবারেও। জীবনযাত্রার ব্যয় বৃদ্ধির ফলে অনেক পরিবার তাদের দৈনন্দিন খাবারের চাহিদা আগের তুলনায় অনেক কমিয়ে দিয়েছে। অনেক পরিবারে মাছ কিংবা মাংসের জোগান কমে গেছে
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
ডিম ও দুধের মূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় এগুলোও অনেকের নাগালের বাইরে চলে গেছে। আগে গরিবের আমিষ বলে পরিচিত একটি ডিম খেলে এখন খেতে হচ্ছে অর্ধেক; যার ফলে খাদ্যপুষ্টিতে বড় পরিবর্তন লক্ষ করা যাচ্ছে। একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির পুষ্টি চাহিদা তাঁর দৈনিক পরিশ্রম ও দেহের ওজনের ওপর নির্ভর করে। প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় ছয়টি গ্রুপের (শর্করা, আমিষ, ভিটামিন, খনিজ, পানি ও চর্বি) খাবার পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকা প্রয়োজন
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
জাতীয় খাদ্য গ্রহণ নির্দেশিকা অনুযায়ী দৈনিক গড়ে একজন পূর্ণবয়স্ক পুরুষের দুই হাজার ২০০ কিলোক্যালরি এবং একজন পূর্ণবয়স্ক মহিলার এক হাজার ৭০০ কিলোক্যালরি শক্তি প্রয়োজন। এই ক্যালরি পূরণের জন্য ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ বিভিন্ন প্রকার শর্করা, ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ স্নেহ পদার্থ এবং ১৫ থেকে ২০ শতাংশ আমিষ গ্রহণ করা উচিত। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের দৈনিক ২৭০ থেকে ৪৫০ গ্রাম চাল, আটা, ভুট্টা গ্রহণ করা উচিত। এর সঙ্গে ৩০০ থেকে ৬০০ গ্রাম শাক-সবজি এবং ১৫০ থেকে ৩৫০ গ্রাম মাছ, মাংস, ডিম খেতে হবে
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
এ ছাড়া প্রতিদিন ৩০ থেকে ৪৫ মিলিগ্রাম তেল ও চর্বি এবং ৩০ থেকে ৬০ গ্রাম ডালজাতীয় খাদ্য, দুধ ও দুধজাতীয় খাবার দৈনিক ১৫০ থেকে ৪৫০ মিলিগ্রাম, ফলমূল ১০০ থেকে ২০০ গ্রাম এবং চিনি ১৫ থেকে ২৫ গ্রাম থাকতে হবে। দৈনিক সুষম খাদ্যের পরিমাণের ঘাটতি হলে মানুষের দেহে অপুষ্টির প্রভাব পরিলক্ষিত হয় এবং অপুষ্টিজনিত বিভিন্ন রোগব্যাধির সমস্যায় পড়তে হয়। পুষ্টিহীনতার কারণে মানুষের শারীরিক ও মানসিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়, এমনকি পুষ্টির অভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গিয়ে অনেকে অল্পতেই শারীরিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে। শারীরিক কর্মদক্ষতা কমে গিয়ে মানুষের কর্মবিমুখ হয়ে যাওয়ার আশঙ্কা তৈরি হয়
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
বাড়ন্ত শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি, হাড়ের গঠন ও মস্তিষ্কের বিকাশ লোপ পায়। সর্বোপরি দেশে পুষ্টিহীন অসুস্থ জনসংখ্যা বাড়ার আশঙ্কা তৈরি হতে পারে। তবে বাইরে থেকে এই আশঙ্কা তাৎক্ষণিক বোঝার কোনো উপায় নেই। একটা নির্দিষ্ট সময় পর, হতে পারে কয়েক বছর বা যুগের ব্যাপ্তিকালে পুষ্টিহীনতার প্রভাব পড়তে পারে
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
তবে একবার এই সমস্যায় পড়লে সে জায়গা থেকে বের হয়ে আসা খুবই কঠিন। তাই খাদ্যদ্রব্যের মূল্য নিয়ন্ত্রণে রেখে সুষম খাদ্যের সরবরাহ নিশ্চিতকরণের মাধ্যমে দেশের জনগণকে কর্মশীল, উদ্যমী, পরিশ্রমী ও মেধাবী জাতি হিসেবে গড়ে তোলার জন্য দেশের সব প্রতিষ্ঠানকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে।দ্রব্যমূল্যের নিয়ন্ত্রণহীন ঊর্ধ্বগতি সাধারণ মানুষের জীবনে ভোগান্তি বাড়িয়ে দিয়েছে। আর এই ভোগান্তিতে আরো নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে শিক্ষার্থীদের মধ্যে
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
বিশেষ করে সবচেয়ে কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে দিন পার করছে আবাসিক হল ও মেসে অবস্থানরত শিক্ষার্থীরা। কারণ দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি পাওয়ায় আবাসিক হল বা মেসের ক্যান্টিন মালিকরা শিক্ষার্থীদের নিত্যদিনকার খাবার যে দামে সরবরাহ করতে পারতেন, তা জোগাড় করতে তাঁদের এখন রীতিমতো হিমশিম খেতে হচ্ছে। প্রতিদিনকার সুষম খাদ্য সরবরাহ করতে তাঁদের গুনতে হচ্ছে বাড়তি টাকা। অন্যদিকে শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে, মূল্যবৃদ্ধির কারণে তারা আগের মতো আর খেতে পারছে না
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
কারণ তাদের বাজেট থাকে একটা নির্দিষ্ট পরিমাণ। ফলে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির কারণে আগের মতো পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করতে না পারায় শিক্ষার্থীদের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার পাশাপাশি পড়াশোনায় মনোযোগ কমে যাচ্ছে। আর এমন হওয়াটাই স্বাভাবিক। এ ছাড়া মেস ভাড়া, যাতায়াত ভাড়া, টিউশন ফি, কোচিং ফি, শিক্ষাসামগ্রীর মূল্যবৃদ্ধি শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্রে মেধা বিকাশ, শারীরিক গঠন ও দৈনন্দিন কাজে ব্যাপক প্রভাব ফেলছে
নিত্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধিতে পুষ্টিহীনতা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি
করোনার সময়ে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দীর্ঘদিন বন্ধ থাকার ফলে এমনিতেই শিক্ষার্থীদের মানসিক অবস্থার ওপর অনেক বিরূপ প্রভাব পড়েছে।দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতির কারণে জনগণের অপুষ্টিজনিত সমস্যা ও স্বাস্থ্যঝুঁকি কাটিয়ে উঠতে হলে সরকারিভাবে বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা প্রয়োজন। যেমন—১. ন্যায্য মূল্যে টিসিবির মাধ্যমে অধিকসংখ্যক খাদ্যপণ্য সরবরাহ করা; ২. ভোক্তা অধিকার সংরক্ষণের মাধ্যমে বাজার তদারকি করা; ৩. অসাধু ব্যবসায়ীরা যাতে সিন্ডিকেটের মাধ্যমে দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধি করতে না পারে সেদিকে নজর দেওয়া; ৪. সরকারি নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলোকে আরো বেশি কার্যকর করে তোলা; ৫. জরুরি পণ্য আমদানি-রপ্তানির ক্ষেত্রে শুল্ক প্রত্যাহার করা এবং ৬. জনগণকে সব ক্ষেত্রে সচেতন ও সাশ্রয়ী হতে অনুপ্রাণিত করা।ভবিষ্যতের উন্নত বাংলাদেশ গড়ে তুলতে হলে রাষ্ট্রের সব প্রতিষ্ঠানকে দ্রব্যমূল্যের এই বিভীষিকাময় পরিস্থিতিতে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের প্রতি যত্নশীল হওয়া একান্ত জরুরি।লেখক : অধ্যাপক, ফার্মেসি বিভাগ রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দামের ওঠানামা, সার ও এলএনজির বাড়তি দামের কারণে এখন ভর্তুকির হিসাব মেলাতে হিমশিম খাচ্ছে সরকার। সম্প্রতি শুধু জ্বালানি তেলের দামই দুইবার সমন্বয় করা হয়েছে। বাড়ানো হয়েছে সারের দাম। এসব কারণে অর্থনীতির শেষ ভরসা কৃষি নিয়েও বাড়ছে দুশ্চিন্তা
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
এ অবস্থায় বোরো মৌসুম সামনে রেখে ডিজেলে ভর্তুকি বাড়ানোর চিন্তা করছে সরকার। জ্বালানি তেল ও গ্যাসের বাড়তি দামের কারণে বিদ্যুৎ খাতেও ভর্তুকি কমানো যাচ্ছে না। ফলে বিদ্যুতের দাম আবার বাড়ানোর পথে হাঁটছে সরকার। পরিস্থিতি সামাল দিতে কম গুরুত্বপূর্ণ খাতের ভর্তুকি সমন্বয় করে গুরুত্বপূর্ণ এসব খাতে অর্থ সরবরাহ করা যায় কি না তা খতিয়ে দেখছে অর্থ মন্ত্রণালয়
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
এ ক্ষেত্রে কোন কোন খাতে ভর্তুকি অর্থনীতিতে বিশেষ প্রভাব ফেলছে না সেগুলো চিহ্নিত করার কাজ চলছে। অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।চলতি অর্থবছরের বাজেটে ভর্তুকি খাতে বরাদ্দ রাখা হয়েছে ৮২ হাজার ৭৪৫ কোটি টাকা। এর বেশির ভাগ যাবে এসব পণ্যের ভর্তুকিতে
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
গম, পাম অয়েল, সয়াবিন তেল, কয়লা, ভুট্টা ও চাল আমদানিতেও এখন ভর্তুকির অর্থ খরচ হবে।অর্থ বিভাগের দায়িত্বশীল একজন কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে কালের কণ্ঠকে বলেন, বাজেটে যে হিসাব করে ভর্তুকির বরাদ্দ রাখা হয়েছিল তা বৈশ্বিক অবস্থার কারণে আর ঠিক রাখা যাচ্ছে না। তাই ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করার চিন্তা করা হচ্ছে। যার প্রয়োজন কম, তার বেশি থাকলে সেটি অন্য মন্ত্রণালয়কে দেওয়া হতে পারে
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
তবে এটি এখনো চূড়ান্ত হয়নি।অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, অর্থ বিভাগ থেকে সামষ্টিক অর্থনৈতিক উইংকে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের কী পরিমাণ ভর্তুকি প্রয়োজন তা মূল্যায়ন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। সামষ্টিক অর্থনৈতিক উইংয়ের মূল্যায়ন পাওয়ার পর ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করা হতে পারে।মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, এ ক্ষেত্রে ডিসেম্বর পর্যন্ত পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করবে সরকার
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
তারপর সংশোধিত বাজেটের কাজ শুরু হবে। তখন এগুলো সমন্বয় করা হবে।ডিজেলে ভর্তুকি বাড়বেদেশে জ্বালানি তেলের চাহিদা প্রায় ৬৫ লাখ টন। এর ৭৩ শতাংশই ডিজেল
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
সম্প্রতি পাঁচ টাকা কমানোর পর ডিজেলের খুচরা মূল্য এখন ১০৯ টাকা লিটার। কিন্তু এই দাম কৃষির উৎপাদন খরচ বাড়িয়ে দিচ্ছে।সামনে বোরো মৌসুম। আমনের টাকা কৃষক অনেক সময় বোরোতে বিনিয়োগ করে সার, ডিজেল কেনে এবং সেচ খরচসহ অন্যান্য খরচ মেটায়
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
কিন্তু অনাবৃষ্টির কারণে আমন ধান রোপণ ব্যাহত হচ্ছে। এতে উৎপাদন কম হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।তাই বোরো মৌসুমকে সামনে রেখে সরকার ডিজেলে ভর্তুকি বাড়ানোর কথা চিন্তা করছে। গত ১ সেপ্টেম্বর রাজধানীর ব্র্যাক সেন্টারে এক কর্মশালায় কৃষিমন্ত্রী আব্দুর রাজ্জাক বলেছেন, ডিজেলে আরো ভর্তুকি দেওয়ার চিন্তাভাবনা হচ্ছে
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
বাংলাদেশ পেট্রোলিয়াম করপোরেশন (বিপিসি) জানায়, ১০৯ টাকায় ডিজেল বিক্রি করে প্রতি লিটারে তাদের ১৯.৬১ টাকা লোকসান হচ্ছে। জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ গত সোমবার এক ফেসবুক পোস্টে জানিয়েছেন, বিপিসি গত ছয় মাসে জ্বালানি তেল (সব ধরনের) বিক্রি করে আট হাজার ১৪ কোটি ৫১ লাখ টাকা লোকসান দিয়েছে।এলএনজি, বিদ্যুৎ ও সারে ভর্তুকি নিয়েও চিন্তায় সরকারস্পট মার্কেটে তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাসের (এলএনজি) দাম অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে গেছে। জাপান ও কোরিয়াভিত্তিক বাজার জেকেএমে স্পট এলএনজি বিক্রি হচ্ছে প্রায় ৫৮ ডলারে
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
এক বছর আগেও এটি ১০ ডলারের নিচে ছিল। বাড়তি এ দামের কারণে সরকার গত মাসের শুরু থেকে স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি আমদানি বন্ধ রেখেছে।অভ্যন্তরীণ চাহিদা মেটাতে সরকার এখন দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিতে কাতার ও ওমান থেকে ৫৬ কার্গো এলএনজি আমদানি করছে। এ জন্যও ভর্তুকির অর্থ গুনতে হচ্ছে
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
কিন্তু আবার স্পট মার্কেট থেকে এলএনজি কেনার প্রয়োজন হলে এ খাতে ভর্তুকি ব্যয় আরো বাড়বে।জ্বালানি তেল এবং গ্যাসের কারণে বিদ্যুতেও প্রভাব পড়ছে। বিদ্যুতে সরকার গত ৯ মাসে ক্যাপাসিটি চার্জ বা কেন্দ্রভাড়া দিয়েছে প্রায় ১৭ হাজার কোটি টাকা। এই টাকা ভর্তুকির তহবিল থেকে গেছে
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
ভর্তুকি কমাতে এখন বিদ্যুতের দাম বাড়ানো হচ্ছে।চিন্তা বাড়াচ্ছে আরো ছয় পণ্যবিভিন্ন দেশ থেকে গম, পাম অয়েল, সয়াবিন তেল, কয়লা, ভুট্টা ও চাল আমদানি করে সরকার। বুধবার সরকারি ক্রয়সংক্রান্ত মন্ত্রিপরিষদ কমিটি রাশিয়া থেকে পাঁচ লাখ টন গম এবং ভিয়েতনাম ও ভারত থেকে তিন লাখ ৩০ হাজার টন চাল আমদানির অনুমোদন দিয়েছে। জিটুজি সমঝোতার আওতায় এই উদ্যোগে মোট খরচ হবে তিন হাজার ৫৯০ কোটি টাকা
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
এ ছাড়া মিয়ানমার থেকে আরো দুই লাখ টন চাল আমদানির জন্য একটি স্মারক চুক্তি (এমওইউ) সই করেছে বাংলাদেশ। এই ছয় পণ্য আমদানিতে সরকারকে গত বছরের তুলনায় চলতি বছরের জুলাই থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত ৭৬ হাজার ৭৯৪ কোটি ২৭ লাখ ১০ হাজার টাকা বেশি ব্যয় করতে হবে। এ টাকার বেশির ভাগ যাবে ভর্তুকি খাত থেকে।জানতে চাইলে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক অর্থ উপদেষ্টা মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম কালের কণ্ঠকে বলেন, এখনই ক্যাপাসিটি চার্জের বিষয়টি নিয়ে বিদ্যুেকন্দ্রগুলোর সঙ্গে সরকারের বসা উচিত
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
অযথা এ খাতে সরকারের পয়সা খরচ হচ্ছে। এর গ্রহণযোগ্যতা নিয়েও প্রশ্ন আছে। এ ছাড়া জ্বালানি তেলের মতো সারেও আমদানি শুল্ক প্রত্যাহার বা কমানো উচিত।মির্জ্জা মো. আজিজুল ইসলাম বলেন, ‘রেমিট্যান্স খাতে এখন প্রণোদনা দেওয়ার প্রয়োজন আছে বলে মনে করি না
ভর্তুকির বরাদ্দ পুনর্বিন্যাস করতে যাচ্ছে সরকার
কারণ হুন্ডির মাধ্যমে পাঠালে প্রণোদনার চেয়ে বেশি অর্থ পাওয়া যাচ্ছে। তাই যারা ভালো তারা বৈধ পথে এমনিতেই পাঠাবে। ’ এ খাতের মতো যেসব খাত কম গুরুত্বপূর্ণ সেগুলোর টাকা গুরুত্বপূর্ণ খাতে দেওয়া যেতে পারে মনে করেন তিনি।
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
দেশের সাম্প্রতিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, রাজনৈতিক দলগুলোর ভেতরে-বাইরে মেরুকরণ, আগামী জাতীয় নির্বাচন, বড় রাজনৈতিক দলগুলোর ভবিষ্যৎ ও নেতৃত্ব—এসব বিষয় নিয়ে কালের কণ্ঠের কাছে নিজের বিশ্লেষণ তুলে ধরেছেন রাষ্ট্রবিজ্ঞানী অধ্যাপক হারুন-অর-রশিদ। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন তৈমুর ফারুক তুষারকালের কণ্ঠ : বিএনপি কিছুদিন ধরে সারা দেশে কর্মসূচি পালন করছে। ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়াচ্ছে। হামলার শিকার হচ্ছে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
তবে মাঠ ছাড়ছে না। বিএনপির এই রাজনৈতিক অবস্থানকে কিভাবে মূল্যায়ন করবেন?হারুন-অর-রশিদ : যুক্তরাজ্যে যেমন লেবার পার্টি ও কনজারভেটিভ পার্টি আছে, ভারতে যেমন বিজেপি ও কংগ্রেস আছে, তেমনি আমাদের এখানে আওয়ামী লীগ বনাম বিএনপি হতে পারে। কিন্তু তার কিছু পূর্বশর্ত আছে। তাদের যেটা দরকার, মুক্তিযুদ্ধবিরোধী জামায়াতের সঙ্গ সব সময়ের জন্য ত্যাগ করা
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
দুই. মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ও চেতনাকে ধারণ করা। তিন. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করা। চার. জনগণের রায়ের প্রতি আস্থা রাখা। এগুলো যদি বিএনপি করতে পারে তাহলে একটা দায়িত্বশীল দল হিসেবে তাদের এগিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
এতে খালেদা জিয়া বা তারেক রহমান দায়িত্বে থাকুক আর না থাকুক।এই বিষয়গুলো পালন না করলে বিএনপির যে সংকট, সেখান থেকে উত্তরণের কোনো পথ দেখি না। তবে আমি মনে করি, এটা করা বিএনপির জন্য কঠিন। কারণ তারা যাদের নিয়ে রাজনীতি করে, যাদের ভিত্তির ওপর বিএনপি দাঁড়িয়ে আছে, তাদের মগজে রয়েছে পাকিস্তানি ভাবাদর্শ
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
কালের কণ্ঠ : বিএনপির সংকট তাহলে কোথায়?হারুন-অর-রশিদ : বিএনপির দুই ধরনের সংকট—একটা রাজনৈতিক আদর্শের সংকট, আরেকটা নেতৃত্বের সংকট। তবে বিএনপি কিছু কিছু শিক্ষা নিচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। তারা এখন আর ভারতের বিরুদ্ধে তেমন একটা কথা বলে না। আগে এটা খুব বলত
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
বিএনপির নেতৃত্বে যদি একসময় জিয়া পরিবার না থাকে, অন্যরা যদি নেতৃত্বে আসে এবং তারা যদি মনে করে যে আমরা সংসদীয় ধারায় রাজনীতি করব; বোমা হামলা, সন্ত্রাসমূলক কর্মকাণ্ড করব না, তাহলে তাদের একটা পরীক্ষা দিতে হবে। কাজের মধ্য দিয়ে জনগণকে বোঝাতে হবে যে আমি পরিবর্তন হয়েছি, আমি এখন গণতন্ত্রমনা হয়েছি। জনগণ যদি আবার সন্ত্রাস দেখে, হাঙ্গামা দেখে তাহলে তারা বিএনপির প্রতি আবার মুখ ফেরাতে পারে।জনগণের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ আছে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
একটা সরকার তিন মেয়াদে ক্ষমতায় থাকলে কিছু অসন্তোষ এমনিতেই তৈরি হয়। কিন্তু তার পরও জনগণের সামনে বিকল্প বলে কিছু নেই। জামায়াত-বিএনপি তো বিকল্প হতে পারে না।কালের কণ্ঠ : তাহলে বিএনপি কী করবে?হারুন-অর-রশিদ : আমি মনে করি, আগামী নির্বাচন সামনে রেখে বিএনপির জন্য কল্যাণকর হবে সন্ত্রাসকে বিদায় জানানো
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
গণতান্ত্রিকভাবে সভা-সমাবেশ করার চেষ্টা করা। সর্বশক্তি নিয়ে নির্বাচনে তাদের অংশগ্রহণ করতে হবে। নির্বাচনে জনগণ সিদ্ধান্ত নেবে কাকে ভোট দেবে। সেই নির্বাচনে যদি কারচুপি হয় তাহলে তো সারা বিশ্ব, গণমাধ্যম—সবাই দেখবে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
অন্যায় করে কেউ জোর করে ক্ষমতায় থাকতে পারে না।কালের কণ্ঠ : আপনি জন-অসন্তোষের কথা বললেন। তাহলে আগামী নির্বাচন কি আওয়ামী লীগের জন্য সহজ হবে?হারুন-অর-রশিদ : আমি মনে করি, আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বে মহাজোট গঠন হবে এবং তাকে সক্রিয় করা হবে। এবার তো আওয়ামী লীগের সরকার চলছে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
পরবর্তী সময়ে হবে মহাজোটের।জামায়াতের নির্বাচন কমিশনের নিবন্ধন নেই। কিন্তু বিএনপির সঙ্গে তাদের বোঝাপড়া কোনো না কোনোভাবে থাকবে। কোনো কোনো আসনে জামায়াত দলীয় ব্যানার থেকে না দাঁড়িয়ে স্বতন্ত্র প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
সেখানে বিএনপির সঙ্গে একটা সমঝোতা থাকবে। বিএনপি নতুন কিছু দলকেও সঙ্গে নেওয়ার চেষ্টা করবে। নাগরিক ঐক্য, অধিকার মঞ্চ, বাম জোট—এরা মিলে একটা জোট করতে পারে।ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে গতবার যে ঐক্যফ্রন্ট হয়েছিল, সে রকম এবার হবে না
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
কালের কণ্ঠ : আওয়ামী লীগ নেতৃত্বাধীন ১৪ দলেও কিছুটা অসন্তোষ আছে। আগামী নির্বাচনে জোট গঠনে তার প্রভাব পড়তে পারে কি?হারুন-অর-রশিদ : ১৪ দলের মধ্যে কিছুটা অসন্তোষ থাকলেও তা কমিয়ে ফেলা যাবে। যে কারণে ১৪ দল গঠন করা হয়েছিল, সে কারণগুলো শেষ হয়ে যায়নি। আগামী দিনে এ কারণগুলো আরো বেশি করে সামনে আসবে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
আগামী নির্বাচনে ১৪ দল ঐক্যবদ্ধ থাকবে বলেই আমার মনে হয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের শক্তির ঐক্য আওয়ামী লীগের জন্য বিশেষ দরকারি।কালের কণ্ঠ : দল হিসেবে আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ এবং তাদের সামনের চ্যালেঞ্জগুলোর বিষয়ে আপনার মূল্যায়ন কী?হারুন-অর-রশিদ : আওয়ামী লীগ দেশের সবচেয়ে পুরনো রাজনৈতিক দল। অসাম্প্রদায়িক আদর্শে তাদের বিশ্বাস
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
তবে দলের অনেকের ব্যক্তিবিশেষে যে বিশ্বাস, সেটা আলাদা বিষয়। বঙ্গবন্ধুর দুটি লক্ষ্য ছিল—বাংলাদেশ স্বাধীন করা এবং দুঃখী মানুষের মুখে হাসি ফোটানো। এখন দলের মধ্যে অনেকে আছে, যাদের আদর্শের বিচ্যুতি ঘটেছে। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছিল—ভোগ নয়, ত্যাগ
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
কিন্তু এরা ভোগকে গুরুত্ব দিচ্ছে। এরা টাকা-পয়সার পেছনে ছুটছে। তবে আশার কথা হলো, সারা দেশে আওয়ামী লীগের লাখ লাখ সাধারণ কর্মী আছে, যারা কোনো দিন ক্ষমতার কাছে যাবে না, কিন্তু তারা বঙ্গবন্ধুর আদর্শকে ধরে রাখবে। এরাই হলো আওয়ামী লীগের শক্তি
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
১৯৭৫ সালের পরে আওয়ামী লীগের ওপর যে ধকল বা আঘাত, সেটা যখন কাটিয়ে উঠেছে তখন আওয়ামী লীগকে নিয়ে কোনো সংশয় আর থাকে না।কালের কণ্ঠ : সে ক্ষেত্রে ঐতিহ্যবাহী এই দলের ভবিষ্যৎ নেতৃত্ব কে বা কেমন হবে?হারুন-অর-রশিদ : শেখ হাসিনার পরে কে নেতৃত্বে আসবে, এই তো! এই মেয়াদে হয়তো সমস্যা দেখা দেবে না। কিন্তু এর পরের মেয়াদে এই প্রশ্ন সামনে আসবে। আমার মনে হয়, আওয়ামী লীগের মতো একটি বড় দলের এ পরিকল্পনা অবশ্যই আছে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
কালের কণ্ঠ : বিএনপির ভবিষ্যৎ নিয়ে আপনার বিশ্লেষণ কী?হারুন-অর-রশিদ : একসময়ের মুসলিম লীগ ও জামায়াত, এই রাজনৈতিক ধারার একটি সংস্করণ হলো বিএনপি। বাংলাদেশ তো দুই ধারায় বিভক্ত। দেশের একটা অংশ সাম্প্রদায়িক চিন্তা-চেতনায় বিশ্বাসী, ভারতবিদ্বেষী, কট্টর বামপন্থী, যারা মূলত চীনপন্থী। এই অংশটাকেই প্রধানত নেতৃত্ব দেয় বিএনপি
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
ফলে বিএনপি কমবেশি একটা ধারা হিসেবে টিকে থাকবে। এ কারণেই ১৭ বছর ক্ষমতার বাইরে থেকেও বিএনপি টিকে আছে। তাদের আশার আলো তারেক রহমান।বিএনপি নিয়ে আলোচনা করতে গেলে কতগুলো মৌলিক প্রশ্ন দেখা যায়
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
মুক্তিযুদ্ধের বিষয়ে তাদের অবস্থান কী? তারা কি গণতন্ত্রের চর্চা চায়, নাকি ক্ষমতাসীন হতে চায়—এটা বড় প্রশ্ন। ২০১৪-১৫ সালে তারা যে সন্ত্রাস করেছে, তা কোনো ফ্যাসিস্ট দলের পক্ষেও সম্ভব নয়। তারা মহাপাপ করেছে। তারা এখন সেই পাপের প্রায়শ্চিত্ত করছে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
কালের কণ্ঠ : বিএনপি কিভাবে তাদের সংকট থেকে বেরিয়ে আসতে পারে?হারুন-অর-রশিদ : বিএনপির সংকটমুক্তির পথ আমি দেখি না। তারেক রহমানের স্ত্রীকে যদি সামনে নিয়ে আসে তবে এক ধরনের শূন্যতা পূরণ করা সম্ভব। তারেক রহমান লন্ডনে গিয়ে বসে আছেন। তাঁকে তো বাংলাদেশে আসতে কেউ নিষেধ করেনি
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
তাহলে আসছেন না কেন? রাজনীতি করতে গেলে এটুকু সাহস থাকবে না! রাজনীতি করলে সাহস থাকতে হবে। আমি আরাম-আয়েশে থাকব, নিরাপদে থাকব, নেতাও থাকব—এটা তো হয় না। তারেক রহমানের খোমেনি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। ইরানে বিপ্লব হয়েছে, এরপর খোমেনি গিয়ে নেতৃত্বে বসেছেন
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
এটা তারেক জিয়ার ক্ষেত্রে হবে না। তারেকের মতাদর্শগত ভাবনায় হয়তো খোমেনি থাকতে পারে, কিন্তু বাস্তবতায় এটা সম্ভব নয় যে তিনি বিজয়ীর বেশে দেশে ফিরে আসবেন।কালের কণ্ঠ : জাতীয় পার্টিতে আবার একটা অস্থিরতা দেখা দিয়েছে। আগামী নির্বাচনের আগে দলটি কী ধরনের অবয়ব পাবে?হারুন-অর-রশিদ : জাতীয় পার্টির দুই ধারায় বিভক্ত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
জি এম কাদেরের নেতৃত্বে একটি ধারা সরকারবিরোধী ভূমিকায় থাকবে। রওশন এরশাদের নেতৃত্বের অংশের ক্ষমতাসীন দলের সঙ্গে নির্বাচনে অংশ নেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।কালের কণ্ঠ : জামায়াত ও জাতীয় পার্টির ভবিষ্যৎ আপনি কিভাবে দেখেন?হারুন-অর-রশিদ : বাংলাদেশের রাজনীতিতে জামায়াতের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে তারা একা ভোট করে তিনটি আসন পেয়েছিল
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
তাদের মোট ভোট ৬-৭ শতাংশের মধ্যেই ঘুরপাক খায়। পাকিস্তান আমলে যা, এখনো তা-ই।জাতীয় পার্টি বহুধাবিভক্ত হবে। বিগত দিনের চেয়ে তারা আরো বেশি শক্তিহীন হয়ে যাবে
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
একসময়ে ভাসানী ন্যাপ যেমন ছিল, ভবিষ্যতে জাতীয় পার্টি তেমন হয়ে যাবে। জাতীয় পার্টির অনেকে আওয়ামী লীগে চলে আসবে।কালের কণ্ঠ : আগামী নির্বাচন তাহলে কেমন হবে? দলীয় সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন না করতে অনড় বিএনপি। আওয়ামী লীগ বর্তমান ব্যবস্থায় নির্বাচন করতে চায়
আ. লীগের স্বার্থেই সুষ্ঠু নির্বাচন দরকার
হারুন-অর-রশিদ : ২০১৪ সালে নির্বাচন অনেকটা একতরফা হয়েছে। বিএনপি ওই নির্বাচন প্রতিরোধ করতে চেয়েছিল। ১৫৩ আসনে প্রার্থীরা বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এটা আইন অনুযায়ী ঠিক আছে, কিন্তু এটাকে কোনো অর্থেই অংশগ্রহণমূলক নির্বাচন বলা যায় না