content
stringlengths
40
35k
পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে আবারও ৬ দশমিক ৮ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প হয়েছে। এ সপ্তাহের শুরুতে দেশটিতে আরেকটি ভূমিকম্পের আঘাতে ৪০০ জনের প্রাণহানির ঘটনা ঘটেছে। খবর বিবিসির।যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক জরিপ বিভাগ জানায়, পাকিস্তানের বন্দরনগরী করাচি থেকে ২৫০ কিলোমিটার উত্তরে ভূকম্পন অনুভূত হয়। তবে প্রাথমিকভাবে ভূমিকম্পে কোনো ক্ষয়ক্ষতির খবর পাওয়া যায়নি।স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, ভূমিকম্পের কারণে বেলুচিস্তান ও সিন্ধু অঞ্চলে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। দেশটির সীমান্তবর্তী কোয়েটা অঞ্চলেও ভূমিকম্প অনুভূত হয়েছে।গত ২৪ সেপ্টেম্বর পাকিস্তানে ৭ দশমিক ৭ মাত্রার শক্তিশালী ভূমিকম্প আঘাত হানে। এতে ৪০০ লোকের প্রাণহানির ঘটনা ঘটে। সরকারি সূত্রে জানা গেছে, ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে দেশটির তিন লাখ মানুষ। ক্ষতিগ্রস্তরা পর্যাপ্ত ত্রাণ পাচ্ছে না। সরকারি সূত্রগুলো বলছে, পাকিস্তানে জঙ্গিদের তত্পরতা ও সড়কের অব্যবস্থাপনার কারণে ক্ষতিগ্রস্তদের কাছে সময়মতো ত্রাণ পৌঁছানো যাচ্ছে না।আর কোনো তৃতীয় শক্তিকে সমর্থন দেবে না ব্যবসায়ী সমাজ। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনের (এফবিসিসিআই) সম্মেলন কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান দেশের শীর্ষ ব্যবসায়ীরা। এতে লিখিত বক্তব্য পড়েন এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ।বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বেগ প্রকাশ করে কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘এর আগে তৃতীয় শক্তিকে সমর্থন দিয়ে তার ফল হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছেন ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীদের এর মাশুল দিতে হয়েছে। অনেককে দেশ ছাড়তে হয়েছে। তাই আর কোনো তৃতীয় শক্তিকে সমর্থন দেবে না ব্যবসায়ী সমাজ।’ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে সংবাদ সম্মেলনে আকরাম উদ্দিন আহমেদ দুই নেত্রীকে আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে বর্তমান সমস্যা সমাধানের আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ব্যবসায়ী সমাজ আশা করছে, প্রধান দুই দলের সমঝোতার মাধ্যমে দেশবাসীর জন্য শান্তির পথ সুগম হবে। এ ছাড়া দুই নেত্রীর টেলিফোন আলাপ-আলোচনায় অগ্রগতি হবে বলেও আশাবাদ ব্যক্ত করেন তিনি।এদিকে বিদ্যমান রাজনৈতিক সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে বৈঠকের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সম্ভব হলে আজই এটা হতে পারে বলে সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়।সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুন, মীর নাসির হোসেন, সালমান এফ রহমান, আনিসুল হক, এ কে আজাদ, মো. আকরাম হোসেন, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি রোকেয়া আফজাল রহমান, বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম, বিকেএমইএর সভাপতি সেলিম ওসমান ও ডিসিসিআইয়ের সভাপতি সবুর খান।রাজধানীর পল্টনে সিপিবির সমাবেশে বোমা হামলার ১২ বছর ১০ মাস পর এই মামলায় মুফতি হান্নানসহ ১৩ জঙ্গির বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সিআইডি। আসামিরা সবাই নিষিদ্ধ জঙ্গি সংগঠন হরকাতুল জিহাদের (হুজি) নেতা-কর্মী।এ ঘটনায় করা মামলায় হত্যা ও বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে পৃথক দুটি অভিযোগপত্র গতকাল বুধবার ঢাকার মুখ্য মহানগর হাকিম আদালতে দাখিল করেন তদন্তকারী কর্মকর্তা সিআইডির পরিদর্শক মৃণাল কান্তি সাহা। তবে আদালতের সময় শেষ হয়ে যাওয়ায় গতকাল অভিযোগপত্র বিচারকের কাছে উপস্থাপন করা হয়নি।১৩ আসামি: অভিযুক্ত আসামিরা হলেন জঙ্গি নেতা মুফতি আবদুল হান্নান, শেখ ফরিদ ওরফে শওকত ওসমান, মুফতি আবদুল হাই, মুফতি শফিকুর রহমান, মাওলানা আবদুল হান্নান ওরফে সাব্বির, জাহাঙ্গীর আলম ওরফে ওস্তাদ জাহাঙ্গীর বদর, মুফতি মাঈনুউদ্দীন শেখ ওরফে জান্দাল, রফিকুল ইসলাম ওরফে মিরাজ, মশিউর রহমান, নুর ইসলাম, আরিফ হাসান সুমন, মুহিবুল্লাহ মুত্তাকিন ও আনিসুল ইসলাম ওরফে মুরসালিন। তাঁদের মধ্যে দুই সহদোর মুরসালিন ও মুত্তাকিন বর্তমানে ভারতের তিহার কারাগারে আটক আছেন। এই দুজনসহ মুফতি হান্নান, শেখ ফরিদ, আবদুল হাই, শফিকুর রহমান, সাব্বির, জাহাঙ্গীর বদর, জান্দাল ও সুমন ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা মামলারও আসামি। আর নুর ইসলাম পুলিশ সদর দপ্তরের সাবেক কর্মী। মশিউর রহমান ও রফিকুল ইসলাম সরাসরি বোমা হামলায় জড়িত ছিলেন।আসামিদের সাতজন পলাতক রয়েছেন। তাঁদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি ও ক্রোকি পরোয়ানা জারির জন্য আদালতে আবেদন করা হয়েছে। অভিযোগপত্রে ১০৭ জনকে সাক্ষী করা হয়েছে।অব্যাহতির আবেদন: আদালত সূত্রে জানা গেছে, অভিযোগপত্রে হুজির নেতা মাওলানা আবদুস সালাম, হাফেজ আবু তাহের, মুফতি মনির উদ্দিন, সিলেটের শরীফ শাহেদুল আলম ওরফে বিপুল, নারায়ণগঞ্জের শাহাদাত হোসেন জুয়েল, ভারতীয় জঙ্গি ও লস্কর-ই-তাইয়েবার নেতা মাওলানা ওবায়দুল্লাহ ও মনসুর আলী এবং রাজধানীর সিদ্ধেশ্বরী এলাকার বিএনপি নেতা ও সাবেক ওয়ার্ড কমিশনার আরিফুল ইসলামসহ ৩০ জনকে অব্যাহতির দেওয়ার আবেদন করা হয়েছে।২০০১ সালে ২০ জানুয়ারি পল্টনে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সমাবেশে বোমা হামলা হয়। এতে সিপিবির পাঁচ নেতা-কর্মী নিহত হন।পুলিশ ২০০৩ সালের ১৭ ডিসেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিলে এ ঘটনায় দায়ের হওয়া মামলার অপমৃত্যু ঘটে। পরে ২০০৫ সালের ২৭ জানুয়ারি সিআইডির আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে মামলাটি পুনরুজ্জীবিত করার আদেশ দেন আদালত। কিন্তু তৎকালীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলে মামলার তদন্তে কোনো অগ্রগতি হয়নি। তবে ২০০৬ সালের নভেম্বরে মুফতি হান্নান আদালতে দেওয়া স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে অন্য অনেক ঘটনার সঙ্গে পল্টনের বোমা হামলায়ও জড়িত থাকার কথা বলেন। পরে এক-এগারোর পটপরিবর্তনের পর তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে তদন্তে কিছুটা গতি আসে।বড়দিন ও ইংরেজি নববর্ষ উপলক্ষে ২৫ ডিসেম্বর হোটেল আগ্রাবাদে শুরু হয়েছে সাত দিনব্যাপী টার্কি বুফে ডিনার খাদ্য উৎসব। ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে এই আয়োজন।ডিনারে থাকছে ম্পেশাল টার্কি, হায়দরাবাদি বিরিয়ানি, রোস্ট চিকেন সুপ্রিম, গ্রিল চিকেন, বিফ হট পট, মেজবান কারিসহ বেশ কয়েক পদের খাবার। এ উৎসবে থাকছে র‌্যাফেল ড্র। এর প্রথম পুরস্কার ঢাকা-সিঙ্গাপুর-ঢাকা বিমান টিকিট, দ্বিতীয় পুরস্কার লং বিচ হোটেলের কাপল রুমে দুই রাত তিন দিন থাকার সুযোগ এবং তৃতীয় পুরস্কার হোটেল আগ্রাবাদ রয়েল স্যুইটে দুদিন এক রাত থাকার ব্যবস্থা।২৫ ডিসেম্বর খাদ্য উৎসবে উপস্থিত ছিলেন হোটেল আগ্রাবাদের জ্যেষ্ঠ ব্যবস্থাপক শাহিন মোহাম্মাদ ও ব্যবস্থাপক ইফতেকার সাফি, ব্যবস্থাপক মনিরুল আলম সরকার, সহকারী ব্যবস্থাপক হাবিবা সুলতানা প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি।
বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া আজ শনিবার রাতে যশোরের উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। যশোর সার্কিট হাউজে রাত্রিযাপন শেষে কাল রোববার সকালে তিনি খুলনার উদ্দেশে যাত্রা করবেন। জানা গেছে, বিরোধী দলীয় নেত্রীর যশোরে শুধু রাত্রিযাপনের কর্মসূচি থাকলেও পুরো জেলায় সাজ সাজ রব পড়ে গেছে। এ উপলক্ষে যশোর-মাগুরা সীমান্ত সীমাখালী থেকে যশোর-খুলনা সীমান্ত ফুলতলা পর্যন্ত অন্তত ৫০ কিলোমিটার সড়কে অসংখ্য তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। রাস্তার দু’ধারে রং বেরঙের পতাকা ও দলীয় ব্যানার-ফেস্টুন টাঙানো হয়েছে। শহর ও শহরতলিতে চলছে দলীয় নেতা-কর্মীদের পথসভা-মিটিং-মিছিল।এ বিষয়ে জানতে চাইলে যশোর জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, সড়ক পথে ঢাকা থেকে মাগুরা হয়ে রাত ১০ টার দিকে নেত্রী যশোরে পৌঁছাবেন। সার্কিট হাউজে রাত্রিযাপন শেষে সকালে খুলনায় যাবেন। খুলনায় রওনা হওয়ার আগে সার্কিট হাউজ মিলনায়তনে দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে একটি মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা রয়েছে।সাবেরুল আরও বলেন, খালেদা জিয়াকে আগমনী শুভেচ্ছা জানাতে যশোরাঞ্চলে অন্তত ১০০ তোরণ নির্মাণ করা হয়েছে। রাস্তার দু’ধারে টাঙানো হয়েছে অসংখ্য পতাকা, ব্যানার-ফেস্টুন, যা দলীয় নেতা-কর্মীদের চাঙ্গা করছে। দলীয় নেত্রীর বহরে দুই শতাধিক গাড়ি থাকবে বলেও তিনি জানান।একাত্তরে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে মৃত্যুদণ্ডের রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেছেন বিএনপির নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী। ওই দণ্ডাদেশ থেকে খালাস চেয়ে আপিল করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী হুজ্জাতুল ইসলাম খান।এদিকে ট্রাইব্যুনালের ওই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করবে না রাষ্ট্রপক্ষ।অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম সাংবাদিকদের বলেছেন, আপিল করা হবে না। তবে ট্রাইব্যুনাল তাঁকে সর্বোচ্চ দণ্ড দিয়েছেন। এই দণ্ড বহাল রাখার জন্য আপিল বিভাগে রাষ্ট্রপক্ষ থেকে বক্তব্য উপস্থাপন করা হবে।১ অক্টোবর সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরীকে ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।খাবার নিয়ন্ত্রণ করছেন, নিয়মিত হাঁটাহাঁটিও করছেন, ওজনও একটু একটু করে কমছে, কিন্তু পেটটা তো কিছুতেই কমছে না। অনেকেই এ অভিযোগ করে থাকেন। পেটের চর্বি বা মেদ দেহের অন্যান্য মেদের চেয়ে আলাদা এবং বেশি ক্ষতিকর।শরীরের অন্য অংশের মেদ সাধারণত ত্বকের নিচে জমে থাকে। কিন্তু পেটের মেদ ত্বকের নিচে ও পাশাপাশি যকৃৎ, কিডনি ও অন্যান্য অভ্যন্তরীণ অঙ্গের গায়ে লেগে থাকে। তাই পেটের চর্বির সঙ্গে হূদেরাগ, উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস ও অন্যান্য সমস্যার জোরালো সম্পর্ক রয়েছে।অনেকেই পেটের চর্বি কমানোর জন্য বেলি স্ট্রোক অর্থাৎ পেটের মাংসপেশির ব্যায়াম করে থাকেন। কারও ধারণা, পেটের চর্বি সাধারণ ব্যায়ামে কমে না। এর জন্য আলাদা ব্যায়াম করতে হবে। কিন্তু আলাদা ব্যায়ামে পেটের পেশির আকৃতি সুন্দর হলেও চর্বি কমাতে খুব একটা কাজে আসে না।   পেটের চর্বি কমাতে দেহের সার্বিক পরিশ্রম বা ব্যায়াম এবং সঙ্গে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসই যথেষ্ট।সপ্তাহে চার দিন আধঘণ্টা অ্যারোবিক ব্যায়াম দেহের অন্যান্য মেদের সঙ্গে পেটের মেদকেও কমিয়ে আনবে। জগিং, ট্রেডমিল, সাইকেল চালানো ইত্যাদি হলো এ ধরনের ব্যায়াম। কেউ দ্রুত পেটের চর্বি ভাঙতে চাইলে আরেকটু বেশি ব্যায়ামের দরকার হতে পারে। ৪০ থেকে ৪৫ মিনিট হালকা জগিং বা জোরে হাঁটার পর দেহে সঞ্চিত চর্বি ভাঙতে শুরু করে এবং পেশি তা ব্যবহার করে। এই সময়ের পর আরও ১০ থেকে ১৫ মিনিট জগিং করলে বা জোরে হাঁটলে প্রতিদিন একটু একটু করে জমানো চর্বি কমতে থাকবে।এর সঙ্গে চর্বি ও তেলযুক্ত খাদ্য পরিহার করে প্রচুর পরিমাণে আঁশজাতীয় খাদ্য ও শাকসবজি গ্রহণ করতে হবে। পরিমিত আহার করতে হবে। প্রতিদিন অন্তত ১০ গ্রাম আঁশ খেতে হবে। মেদ কমানোর সাধারণ এসব উপায়ে দেহের অন্য অংশের মেদের সঙ্গে পেটের চর্বিও কমবে। এর জন্য আলাদা ব্যায়ামের দরকার হবে না। সূত্র: ওয়েবমেড।নিউক্যাসেল বিশ্ববিদ্যালয় কলেজে প্রকৌশল বিভাগ চালু হয়েছে। এর আগে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় এবং চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক দল কলেজ পরিদর্শন করে সন্তোষ প্রকাশ করে। পরিদর্শক দলে ছিলেন অধ্যাপক শঙ্কর লাল সাহা, বেণু কুমার দে, মো. সাইফুল ইসলাম, হজরত আলী, ও জীবনচন্দ্র পাল। তাঁরা ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষে চার বছরমেয়াদি কোর্স সংযোজনের সুপারিশ করেন। এরপর কলেজ কর্তৃপক্ষ চলতি মাস থেকে শিক্ষার্থী ভর্তির কার্যক্রম শুরু করে। ক্লাস শুরু হবে আগামী জানুয়ারি মাসে। বিজ্ঞপ্তি।
সাড়ে সাত ইঞ্চি মাপের স্ক্রিনযুক্ত সারফেস ট্যাবলেটের একটি সংস্করণ বাজারে আনতে পারে মাইক্রোসফট। আগামী বছরের শুরুতেই এ ট্যাবলেটের ঘোষণা দিতে যাচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। ইয়াহু নিউজের এক খবরে এ তথ্য জানানো হয়েছে।এর আগে চলতি বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে সারফেস ট্যাবলেটের নতুন সংস্করণ ‘সারফেস ট্যাব ২’ ও ‘সারফেস প্রো ২’ নামের ট্যাবলেট বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছিল মাইক্রোসফট।এ প্রসঙ্গে মাইক্রোসফট জানিয়েছে, সারফেসের নতুন সংস্করণে প্রসেসর হয়েছে দ্রুতগতির এবং ব্যাটারি-লাইফ বেড়েছে। এ ছাড়া অপারেটিং সিস্টেম উইন্ডোজ ৮.১ নির্ভর ট্যাব দুটিতে ক্যামেরাও উন্নত করেছে বিশ্বের বৃহত্তম সফটওয়্যার নির্মাতা প্রতিষ্ঠানটি। উইন্ডোজ আরটি ট্যাবলেটের নতুন সংস্করণ ১০.৬ ইঞ্চি মাপের সারফেস-২তে যুক্ত হয়েছে এনভিডিয়া টেগরা ৪ প্রসেসর, সামনে ৩.৫ মেগাপিক্সেল ও পেছনে ৫ মেগাপিক্সেলের ক্যামেরা। এর দাম পড়বে ৫৭৫ মার্কিন ডলার। ইনটেলের প্রসেসরনির্ভর সারফেস প্রো ২ ট্যাবটিতে আগের সংস্করণের চেয়ে ৬০ শতাংশ ব্যাটারি-লাইফ উন্নত করা হয়েছে বলে মাইক্রোসফট দাবি করেছে। ৬৪ গিগাবাইট মডেলের সারফেস প্রো ২-এর দাম হবে এক হাজার ১৫০ মার্কিন ডলার।এদিকে বাজারবিশ্লেষকেরা বলছেন, ছোট আকারের ট্যাবলেটের জনপ্রিয়তা বাড়তে থাকায় মাইক্রোসফট এরই মধ্যে সাত ইঞ্চি মাপের ট্যাবলেট নিয়ে পরীক্ষা করছে।গবেষণা ও তথ্যবিশ্লেষক প্রতিষ্ঠান আইএইচএস আইসাপ্লাই ও এনপিডি ডিসপ্লে সার্চের গবেষকেরা দাবি করেছেন, সারফেস ২-এর দুটি সংস্করণের পর ভিন্ন মাপের আরেকটি ট্যাবলেট দ্রুত বাজারে আনবে মাইক্রোসফট। থ্রিজি ও ফোরজি সুবিধার সাত ইঞ্চি মাপের এ ট্যাবলেটে এআরএম প্রসেসর থাকবে।আইপ্যাড মিনি, আমাজানের কিন্ডল ও গুগল নেক্সাস ট্যাবের সঙ্গে প্রতিযোগিতার জন্য ছোট আকারের উইন্ডোজ ট্যাব বাজারে আনার প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে মাইক্রোসফট।মাগুরার মোহাম্মদপুর উপজেলার ধোয়াইল বাজারে পুলিশের সঙ্গে হরতালকারীদের সংঘর্ষে মারুফ সরকার (২০) নামের এক যুবক নিহত হয়েছেন। মাগুরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে দুজনকে। এর মধ্যে একজন গুলিবিদ্ধ বলে চিকিত্সক জানিয়েছেন।এদিকে নিহত মারুফকে নিজ সংগঠনের কর্মী বলে দাবি করেছেন জেলা ছাত্রদলের সভাপতি তরিকুল ইসলাম।গুলিবিদ্ধ অবস্থায় চিকিত্সাধীন শামীম আহমেদ জানান, মারুফ পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছেন। তবে মাগুরা সদর হাসপাতালের কর্তব্যরত চিকিত্সক অরুণ কান্তি ঘোষ জানান, মারুফকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয়। গুলির আঘাতে মারা গেছেন কি না, তা তিনি নিশ্চিত নন। ময়নাতদন্ত শেষে বিষয়টি নিশ্চিত হওয়া যাবে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হরতালের পক্ষে মিছিল ও মহড়া দেওয়ার জন্য মোহাম্মদপুর উপজেলার ধোয়াইল বাজারে শত শত মানুষ জড়ো হচ্ছিল। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের কর্মীরা ধাওয়া দিলে উভয় পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে এই হতাহতের ঘটনা ঘটে।মোহাম্মদপুর থানার পুলিশ রাবার বুলেট ছোড়ার বিষয়টি অস্বীকার করেছে। তারা জানায়, সংঘর্ষের সময় শরকির (দেশীয় অস্ত্র) আঘাতে মারুফের মৃত্যু হতে পারে।যুদ্ধ নিয়ে বাজারে নানা ধরনের কম্পিউটার গেমস প্রচলিত রয়েছে। এসব গেমে যুদ্ধবিষয়ক আন্তর্জাতিক নিয়ম বা জেনেভা কনভেনশন মানা হচ্ছে কি না, তা নিয়ে আন্তর্জাতিক রেডক্রস কম্পিউটার গেমস নির্মাতাদের সঙ্গে কাজ শুরু করেছে। রেডক্রস বলছে, ‘অনেক কম্পিউটার গেমস রয়েছে, যেখানে যুদ্ধাপরাধের মতো কাজ করলেও খেলোয়াড়েরা পুরস্কার হিসেবে পয়েন্ট পাচ্ছে।’ তাই রেডক্রস মনে করছে, গেমে আসল যুদ্ধের নিয়মের প্রচলন দরকার। রেডক্রস বলছে, ‘এসব ভার্চুয়াল গেমস এখন বাস্তবের অনেকটাই কাছাকাছি এসে যাচ্ছে এবং এ কারণেই সত্যিকারের যুদ্ধের যে নিয়ম, তা গেমে থাকা উচিত।’মেডাল অব অনার কিংবা কল অব ডিউটির মতো গেমে যুদ্ধাপরাধের মতো কাজ করলেও পয়েন্ট বাড়ায়। রেডক্রস মনে করছে, এ অবস্থার পরিবর্তন দরকার। নিরস্ত্র সাধারণ নাগরিকদের হত্যা কিংবা নানা ধরনের নির্যাতন এসব গেমসে চিত্রিত হয় এবং এর জন্য খেলোয়াড় পুরস্কৃত হন। এই নিয়ম মোটেই জেনেভা কনভেনশনের মধ্যে পড়ে না।রেডক্রসের আহ্বানে কোনো কোনো প্রতিষ্ঠান সাড়া দিচ্ছে।কম্পিউটার গেমস নির্মাতাপ্রতিষ্ঠান বোহেমিয়া ইন্টারঅ্যাকটিভের প্রধান নির্বাহী মারেক স্পানেল জানান, তাঁরা রেডক্রসের সঙ্গে একমত হয়েছেন এবং গেমসের নিয়ম তাঁরা পাল্টাতে যাচ্ছেন।’ ফলে জেনেভা কনভেনশনের নিয়ম ভঙ্গ হয়, এমন কাজের জন্য এসব গেমসে কোনো খেলোয়াড় আর পয়েন্ট পাবেন না।—বিবিসি অবলম্বনে প্রদীপ সাহাজাতীয় শিশু-কিশোর সংগঠন ‘খেলাঘর’ পরিচালিত ছোটদের সাংস্কৃতিক বিদ্যালয় শৈশব-এ সংগীত, নৃত্য ও চিত্রাংকন বিভাগে জানুয়ারি সেশনে ভর্তি চলছে। ভর্তিসংক্রান্ত তথ্যের জন্য-‘শৈশব’, ৩৫ ফোরক ম্যানসন (চতুর্থ তলা), কদম মোবারক বাই লেইন, মোমিন রোড, চট্টগ্রাম—এই ঠিকানায় যোগাযোগ করতে হবে। বিস্তারিত ফোনে (০১৮১৪৯৪২৬৭৬ ও ০১৭১০৪৭২৪৩৭) জানা যাবে। বিজ্ঞপ্তি।
তেল-গ্যাস-খনিজ সম্পদ ও বিদ্যুৎ-বন্দর রক্ষা জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক প্রকৌশলী শেখ মুহাম্মদ শহীদুল্লাহ বলেছেন, লংমার্চের মধ্য দিয়ে সারা দেশের দেশপ্রেমিক জনতা একত্র হয়েছে। এ জনতা সুন্দরবন ধ্বংসের সব চক্রান্ত রুখে দেবে।আজ শনিবার দুপুরে বাগেরহাট শহরের পুরাতন কোর্ট চত্বরে লংমার্চ উপলক্ষে আয়োজিত সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।এই লংমার্চে যাঁরা যোগ দেননি, কিন্তু সুন্দরবন ধ্বংসের বিরুদ্ধে সোচ্চার আছেন, তাঁদের প্রতি নিজ নিজ এলাকায় ‘সুন্দরবন রক্ষা কমিটি’ গড়ে তোলার আহ্বান জানান জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক।সমাবেশে জাতীয় কমিটির সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেছেন, সরকারি নানা ধরনের তত্পরতায় ইতিমধ্যে সুন্দরবন ক্ষতবিক্ষত হয়ে গেছে। রামপাল বিদ্যুেকন্দ্র স্থাপনের মধ্য দিয়ে একে চিরতরে ধ্বংস করে দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। তিনি বলেন, ‘আমাদের যেহেতু বিদ্যুতের সংকট আছে, বিদ্যুত্ আমাদের প্রয়োজন, তাই বিদ্যুত্ উত্পাদনের বিষয়টি আমাদের সামনে মুলো হিসেবে ঝুলোনো হয়েছে। তবে এর পেছনে রয়েছে সুন্দরবনকে চিরতরে ধ্বংস করে দিয়ে একে মুনাফার রসদে পরিণত করার চক্রান্ত। এরই মধ্যে নানা দেশি-বিদেশি কোম্পানি সুন্দরবনের আশপাশের এলাকায় জড়ো হতে শুরু করেছে। এসব আয়োজন বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশকে মায়ের মতো আগলে রাখা সুন্দরবন ধ্বংস হয়ে যাবে। কিন্তু বাংলাদেশের দেশপ্রেমিক মানুষ এ চক্রান্ত বাস্তবায়ন হতে দেবে না।’আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, ‘সব চক্রান্ত বানচাল করে আমরা বাগেরহাটে পৌঁছেছি। সব বাধা অতিক্রম করে রামপালে পৌঁছাব। সুন্দরবনকে আমরা রক্ষা করে ছাড়বই।’বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা রুহিন হোসেন প্রিন্সের সঞ্চালনায় সমাবেশে বাম রাজনৈতিক সংগঠনসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক-পরিবেশবাদী সংগঠনের নেতারা উপস্থিত ছিলেন। সমাবেশে প্রায় ২০ হাজার মানুষ যোগ দিয়েছে। এখন সেখানে সাংস্কৃতিক সমাবেশ হচ্ছে। কিছু সময় পর লংমার্চটি রামপালের উদ্দেশে রওনা হয়ে রামপালের দ্বিগরাজ এলাকায় যাবে। সেখানে বেলা তিনটায় সমাপনী সমাবেশ অনুষ্ঠিত হওয়ার কথা। সেখান থেকে জাতীয় কমিটি সুন্দরবন রক্ষায় পরবর্তী কর্মসূচী ঘোষণা করবে। এরই মধ্যে খুলনা, যশোর, বাগেরহাটের বিভিন্ন এলাকা থেকে প্রায় ২৫ হাজার মানুষ লংমার্চে যোগ দিয়েছে।এর আগে বেলা একটার দিকে বাগেরহাটে প্রবেশ করে লংমার্চের কাফেলা। বাগেরহাট শহরে পৌঁছানোর পর হাজারো মানুষ রাস্তার দুই ধারে দাঁড়িয়ে তাদের স্বাগত জানায়।খুলনায় সমাবেশখুলনা ছাড়ার আগে আজ সকাল সাড়ে নয়টার দিকে নগরের শহীদ হাদিস পার্কে একটি সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে জাতীয় কমিটির খুলনা জেলা আহ্বায়ক মনোজ দাসের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন সদস্যসচিব অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ।আনু মুহাম্মদ বলেন, বিদ্যুেকন্দ্র তৈরি হলে প্রথম আঘাত আসবে সুন্দরবনের ওপর। সুন্দরবন ধ্বংস হলে হাজারো মানুষ প্রাকৃতিক দুর্যোগের শিকার হবে। সুন্দরবনে থাকা প্রাণিকুল মারা যাবে। রামপালের খুব কাছে খুলনা নগর। তাই এখানেও এর প্রভাব হবে তীব্র।এ সময় শহীদ হাদিস পার্ক ও এর আশপাশের এলাকা স্লোগানে স্লোগানে মুখরিত হয়ে ওঠে।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, এই তিন দিনের তথাকথিত হরতালে অনাসৃষ্টির কারণে সারা দেশে এ পর্যন্ত যে ১১ জন নিহত হয়েছেন, তাদের পক্ষ থেকে কেউ মামলা করলে সরকার সহযোগিতা করবে। আর কেউ যদি মামলা না করে, তবে সরকার ১১ জন হত্যার বিচার করবে ও আইনি ব্যবস্থা নেবে। আজ মঙ্গলবার সচিবালয়ে নিজ কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এসব কথা বলেন।স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন, সংবিধান অনুযায়ী সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য যা যা করা দরকার, সরকার তা-ই করবে। ‘ও লেভেল’ ও ‘এ লেভেল’ পরীক্ষার্থীদের হরতালের আওতামুক্ত রাখার কথা উল্লেখ করে মন্ত্রী বলেন, বিরোধী দল দেশের পরীক্ষার্থীদের কথা ভাবেনি। তিনি অভিযোগ করে বলেন, বিদেশি প্রভুদের তুষ্ট রাখতেই তারা এ কাজ করেছে।কলকাতার এনজি কেয়ার হাসপাতাল। অস্ত্রোপচারের পর বিছানায় শুয়ে আছেন শুভ। শুটিং করতে গিয়ে কাঁধের হাড় স্থানচ্যুত হয়ে যায়। এরই মধ্যে মুক্তি পেয়েছে তাঁর অভিনীতপূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী ছবিটি। ইন্টারনেট, মুঠোফোন মারফত অভিনয়ের সাফল্যের কথাও কানে পৌঁছে যায় শুভর। বললেন, ‘বিশ্বাস করুন, হাসপাতালের পুরো সময়টাই মন পড়েছিল বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে।’মুক্তির কয়েক দিন পর ছবিটি নতুন আলোচনার জন্ম দেয়। আলোচনার নায়ক বনে যান শুভ। কম উপস্থিতি, স্বকীয়তার বাইরে, কখনো নেতিবাচক, কখনো মানসিক প্রতিবন্ধীরূপে অভিনয় করে দর্শক-মন জয় করে ফেলেছেন।‘নিজেকে ভাঙতে চেয়েছি। মনে হয়েছে খলনায়কের চরিত্রে আমি পারব। তাই করেছি। যখন কাজ করি, পাগলের মতো করি। পূর্ণদৈর্ঘ্য প্রেমকাহিনী আমাকে চলচ্চিত্রের রেললাইনে উঠিয়ে দিয়েছে। ভালোবাসা জিন্দাবাদ লাইনের ওপর চলতে শুরু করিয়েছে।’তবে ধীরে, আস্তে। নদীর চর রাতারাতি জেগে উঠে আবার রাতারাতি বিলীন হয়। বিলীন হওয়ার পথে হাঁটতে নারাজ শুভ। বললেন, ‘পরিবার শিখিয়েছে সফলতার পেছনে ছুটবে না। যোগ্যতা অর্জনের পেছনে তোমাকে দৌড়াতে হবে।’ডোরা বারবার আড্ডার ছন্দপতন ঘটিয়ে শুভর গায়ে লাফিয়ে পড়ছে। ডোরাটা আবার কে? ইস্কাটনের ছয়তলার ছাদের এক অংশজুড়ে শুভর বসবাস। ছাদের মূল দরজা খুলে ঢুকতেই রীতিমতো বাঘের গর্জনে শুভর গায়ে ঝাঁপিয়ে এসে পড়ল ডোরা। আমরা রীতিমতো ভড়কে গেছি! শুভর আশ্বাসে আমাদের যেন হুঁশ ফিরল। ডোরা শুভর শখের কুকুরছানা। ‘আমাকে না পেলে অস্থির হয়ে ওঠে।’ বললেন শুভ।শুভর শখের ডালপালা বেশ বড়। নিজ হাতে সংগ্রহ করা ক্রিসমাস ট্রি, ক্যাকটাসসহ নানা জাতের ফার্ন ছাদজুড়ে সন্ধ্যা রাতের মায়াবি জ্যোৎস্নায় লুটোপুটি খাচ্ছে। শখের সংগ্রহ পৌঁছেছে ড্রয়িংরুম পর্যন্ত। জানালার পাশে দুটো চেয়ার, মাঝে ছোট্ট একটা টেবিল—শুধু এই-ই। বাকি পুরো ঘর নানান সংগ্রহে ঠাঁসা। নানা দেশের একাধিক ভাস্কর্য, ঘড়ি, মোটর বাইক, হরেক রঙের বাতিসহ আরও কত কী! দেয়ালজুড়ে ফ্রেমে আটা অসাধারণ সব ছবি। শুভ বললেন, ‘আমি যে দেশেই গেছি, পছন্দ হয়েছে তো কিনে ফেলেছি।’চলচ্চিত্রে শুভর বয়স দুই বছর। মুক্তির মিছিলে ছায়া-ছবি, অগ্নি, মন বসেনা—এই তিনটি ছবি। আরও পাঁচটি ছবিতে চুক্তিবদ্ধ হয়েছেন। প্রশ্ন, চলচ্চিত্রে নিজের প্রস্তুতি কেমন? বললেন, ‘দেখুন, বিশেষ করে চলচ্চিত্রে অভিনয় করার জন্য শিল্পীর নৃত্য সম্পর্কে ধারণা, সুঠাম শরীর আর অভিনয়দক্ষতা প্রয়োজন। তা না হলে দর্শক টাকা দিয়ে কেন সিনেমা দেখবেন? নাচের প্রশিক্ষণ নিয়েছি। ব্যায়াম করে শরীর ঠিক রেখেছি।’আমাদের চলচ্চিত্রে কী নায়কসংকট আছে?—কথার পিঠে আসে প্রশ্ন। শুভ বলেন, ‘না, মোটেই না। এখন অনেকেই কাজের অপেক্ষায়। তৈরি করার দায়িত্ব পরিচালকদেরই নিতে হবে।’চলচ্চিত্রে সফল হওয়ার গল্প বলতে গিয়ে এ গল্পে ঢুকে যায় শুভর শুরুর দিনগুলোতে। গল্প বেশ লম্বা, সংগ্রামেরও। বছর পাঁচেক আগের কথা। ময়মনসিংহ থেকে ঢাকা। উঠেছেন নবাবপুরে এক মেসে। দুপুরে খাবারের টাকা জোগাড় হয় তো রাতেরটা হয় না। সারা দিনে মিডিয়ায় কাজের জন্য এখানে ওখানে ধরনা। কোনো কিছুই হচ্ছিল না।‘মন খারাপ হয়ে গেল। ময়মনসিংহ ফিরে গেলাম। একদিন ঢাকা থেকে একটা ফোন। বিটিভির একটা ফ্যাশন শোতে অংশ নিতে হবে। কিন্তু ঢাকায় আসার টাকা নাই। বন্ধু আসিফ ও ইমতিয়াজ ২৫৭ টাকা জোগাড় করে দিল।’ ফ্যাশন শোর শুটিং হবে লালবাগে। মিরপুর থেকে হেঁটে হেঁটে লালবাগ। বিধ্বস্ত চেহারা দেখে পরিচালকের এক চোট বকাও খেতে হয়। টাকার অভাবে প্রতিদিনের রিহার্সালে যোগ দিতে হাঁটতে হয়েছে মাইলের পর মাইল। এখন তা ইতিহাস। ‘ওই সংগ্রামই আজকের যতটুকু সফলতা আমার।’মূল আড্ডায় ফিরব ফিরব, এবারও হলো না। গিটার হাতে ‘তুমি না থাকিলে পাশে যাব কার কাছে’ দরাজ গলায় বারী সিদ্দিকীর এই গানটির দুই লাইন গেয়ে ফেললেন। জানালেন একসময় গান গাইতেন। হলুদের এক অনুষ্ঠানে গেয়ে ৫০০ টাকা আয়ও করেছেন। এখন আর হয় না গান গাওয়া। কেন? ‘অভিনয়ে ব্যস্ততা।’ তবে রুটিন করে সব ধরনের সিনেমা দেখার পাশাপাশি ফোক, গজল শোনেন নিয়মিতই। বারী সিদ্দিকী, নিয়াজ মোহাম্মদ চৌধুরী, সঞ্জীব চৌধুরী, কবিতা কৃষ্ণ মূর্তির গান তাঁর অন্তরের কাছাকাছি। বললেন, ‘গান শুনি, গানের গল্পের আবেগকে ধরার চেষ্টা করি।’এবার চুপ শুভ। তারপর নীরবতা ভেঙে দক্ষিণের জানালা দিয়ে তাকিয়ে বললেন, ‘এই যে আকাশের বিশালতা আমাকে সাহস জোগায়। আমি চলচ্চিত্রে যেকোনো চরিত্রে নিজেকে দাঁড় করানোর চেষ্টা করি। চ্যালেঞ্জটা এমনই হওয়া উচিত!’শুভর শুভ উদয়!প্রেসিডেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বিদ্যালয়ের ১৬তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে ১২ থেকে ২০ ডিসেম্বর পর্যন্ত বিভিন্ন স্থানে দুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। এ সময় উপস্থিত ছিলেন দ্য রাইজিং চিটাগাং লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. গোলজার আলম, পরিচালক (শিক্ষা) মিজানুর রহমান, উপাধ্যক্ষ ই ইউ এম ইনেতখার, পরিচালক (প্রশাসন) মো. জসীম উদ্দিন, পরিচালক (কো-কারিকুলার) ফিরোজ চৌধুরী প্রমুখ।ফেনী জেলার পাঁচগাছিয়া এলাকার রশীদিয়া মাদ্রাসা, লক্ষ্মীপুর জেলার বাঞ্চানগর, পটিয়ার কুসুমপুরা, সাতকানিয়ার ছদহা, কক্সবাজার জেলার চকরিয়া উপজেলার কৈয়ারবিল জামিউল উলুম মাদ্রাসা, চন্দনাইশের জামিজুরি, ফটিকছড়ির শাহনগর, চট্টগ্রাম নগরের পাঁচলাইশ ও কাতালগঞ্জ এলাকায় এসব শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি।
পাকিস্তানের নারীশিক্ষা আন্দোলনের কর্মী মালালা ইউসুফজাই ভবিষ্যতে রাজনীতিবিদ হতে চায়। মালালা মনে করে, রাজনীতিবিদেরা ব্যাপকভাবে সমাজে প্রভাব বিস্তার করতে পারেন।গতকাল শুক্রবার হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের ‘হিউম্যানিটারিয়ান অব দ্য ইয়ার’ নির্বাচিত হওয়ার পর এক ভাষণে মালালা এ কথা বলে। মানবকল্যাণে অবদানের জন্য চলতি বছর তাকে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয় ‘পিটার জে গমেজ হিউম্যানিটারিয়ান অ্যাওয়ার্ড’ দেয়। মালালা এ সময় তার বাড়ি পাকিস্তানের সোয়াত উপত্যকার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে স্মৃতিকাতর হয়ে পড়ে। একদিন সে বাড়িতে ফিরতে পারবে বলেও আশা প্রকাশ করে।হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রেসিডেন্ট ড্রিউ গিল্পিন ফাউস্ট বলেন, ‘মালালা শিক্ষার প্রসারে আগ্রহী হওয়ায় তাকে স্বাগত জানাতে পরে আমি আনন্দিত।’পাকিস্তানি কিশোরী মালালা গত বছরের অক্টোবরে তালেবান জঙ্গিদের হামলার শিকার হয়। পরে উন্নত চিকিত্সার জন্য তাকে যুক্তরাজ্যে নেওয়া হয়। সেখানেই মালালা সুস্থ হয়ে ওঠে।অনিমেষ আইচ পরিচালিত নতুন ছবি ‘জিরো ডিগ্রি’তে অভিনয় করছেন রুহি। খবরটি পুরোনো। কিন্তু এ ছবিতে রুহির অন্তর্ভুক্তির গল্পটি একটু ভিন্নরকম বলেই জানিয়েছেন রুহি।প্রথম আলো ডটকমকে রুহি বলেন, ‘“জিরো ডিগ্রি” ছবিটির জন্য প্রযোজকের পক্ষ থেকে আমার সঙ্গে প্রথমে মে মাসে যোগাযোগ করা হয়। এরপর কয়েক মাস আর কোনো খবর ছিল না। তারপর মাস দুয়েক আগে আবারও যোগাযোগ করেন ছবির প্রযোজক। এর পর তাঁরা আর কোনো যোগাযোগ করেননি। আমি নিজে থেকে ছবির ব্যাপারে আর কোনো যোগাযোগ করিনি। আমার মতো করে ব্যস্ত ছিলাম। এর মধ্যেই জানতে পারি ছবিটিতে মৌসুমী আপু অভিনয় করবেন। হঠাত্ করেই এ মাসের শুরুর দিকে “জিরো ডিগ্রি” ছবির সংশ্লিষ্টরা যোগাযোগ করেন। তারপর তাঁদের সঙ্গে ছবি নিয়ে আবার আলোচনা শুরু হয়। অবশ্য এতেই কিন্তু নির্বাচন চূড়ান্ত হয়নি। ছবিটির জন্য আমাকে অডিশন দিতে হয়েছে। শুনেছি, অডিশনে আমার অভিনয় পরিচালকের পছন্দ হওয়াতেই তাঁরা নির্বাচিত করেছেন। বলতে পারেন, পরীক্ষায় পাস করেই আমি ছবিটিতে অভিনয় করতে যাচ্ছি।’রুহি আরও বলেন, ‘এমনিতে নির্মাতা অনিমেষ আইচ আমার অনেক পছন্দের নির্মাতা। তিনি বেশ নিরীক্ষাধর্মী কাজ করে থাকেন। তাঁর পরিচালনায় তার পরও আঙ্গুরলতা নন্দকে ভালোবেসেছে কাজটি আমার খুবই পছন্দের। ইচ্ছে ছিল, তাঁর পরিচালনায় কোনো কাজ করার আর তা হতে যাচ্ছে, বড়পর্দায়। খুবই চ্যালেঞ্জিং একটি চরিত্র। অভিনয়ের অনেক বেশি সুযোগ আছে। আমি অনেক বেশি হ্যাপি কাজটি করতে যাচ্ছি ভেবে।’‘জিরো ডিগ্রি’ ছবিতে রুহি অভিনয় করবেন মাহফুজ আহমেদের বিপরীতে। তিনি এ ছবিটির অন্যতম একজন প্রযোজকও।নিজের অভিনীত চরিত্র প্রসঙ্গে রুহি বলেন, ‘ছবির স্বার্থে অনেক কিছুই বলতে চাচ্ছি না। শুধু এটুকুই বলব, আমার চরিত্রের নাম নীরা। ছবিতে আমাকে মাহফুজ আহমেদের স্ত্রীর চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যাবে। এটি তাঁর সঙ্গে আমার প্রথম অভিনয়।’‘জিরো ডিগ্রি’ ছবিটি ছাড়া রুহি এরই মধ্যে কাজ শেষ করেছেন ব্রিটিশ বংশোদ্ভূত বাঙালি পরিচালক মনসুর আলীর ‘সংগ্রাম দ্য মুভির কাজ। কাজ করছেন ইসমত আরা শান্তির ‘মায়া-নগর’ ছবিটিরও।এদিকে ‘জিরো ডিগ্রি’ ছবিটি প্রসঙ্গে বিস্তারিত জানাতে আজ মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর একটি রেস্টুরেন্টে শুভ মহরত অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার প্রতিবাদে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার সারা দেশে সহিংসতায় আরও নয়জন প্রাণ হারিয়েছেন। এ নিয়ে দুই দিনে নিহত ব্যক্তির সংখ্যা দাঁড়াল ১৮ জনে।গতকাল সাতক্ষীরায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জামায়াতের এক কর্মী এবং রাস্তা অবরোধের জন্য কাটা গাছের চাপায় একজন নারী প্রাণ হারান। সিরাজগঞ্জে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নিহত হয়েছেন দুজন। গাজীপুরের কালীগঞ্জে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির সংঘর্ষে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) এক সদস্য প্রাণ হরিয়েছেন। চট্টগ্রামের পটিয়ায় পিকেটারদের ধাওয়ায় নছিমন উল্টে চালক নিহত হয়েছেন। রাতে দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ককটেল হামলায় এক তরুণ প্রাণ হারান। আর অবরোধের প্রথম দিন ঢাকায় ককটেল হামলায় আহত আনোয়ারা বেগম গতকাল মারা গেছেন। রাত পৌনে একটায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন গত মঙ্গলবার রাতে দক্ষিণ বনশ্রীতে অগ্নিদগ্ধ লেগুনাচালক মোজাম্মেল হক (১৯)।গত সোমবার নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পরই বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট ৪৮ ঘণ্টার রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধের ডাক দেয়। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ছয়টায় এ কর্মসূচি শেষ হওয়ার কথা থাকলেও গতকাল বিকেল সাড়ে চারটায় ১২ ঘণ্টা বাড়িয়ে আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত করা হয়। এরপর রাত ১১টার দিকে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী সাংবাদিকদের ডেকে নিয়ে অবরোধের সময় আরও ১১ ঘণ্টা বাড়ানোর ঘোষণা দেন। সে হিসাবে শুক্রবার ভোর পাঁচটায় এই অবরোধ শেষ হওয়ার কথা।অবরোধের কারণে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনীর আজকের পরীক্ষা পিছিয়ে শনিবার নির্ধারণ করা হয়েছে।অবরোধ চলাকালে গতকাল চট্টগ্রাম, রাজশাহী, চাঁদপুর, গাজীপুর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ, সিরাজগঞ্জসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে চট্টগ্রাম ও রাজশাহী শহরে পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের দিনভর দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। রাজশাহীতে পুলিশের ছররা গুলিতে আহত হয়েছেন সিটি মেয়র মোসাদ্দেক হোসেন।বিভিন্ন স্থানে অবরোধকারীরা রেললাইন উপড়ে ফেলেছেন, আগুন দিয়েছেন। গাছের গুঁড়ি, বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে সড়ক ও মহসড়কে অবরোধ করা হয়েছে। তবে রাজধানীতে চোরাগোপ্তা ককটেল বিস্ফোরণ এবং গাড়িতে আগুন দেওয়া হলেও বড় ধরনের সংঘর্ষ হয়নি। গণপরিবহন ও ব্যক্তিগত গাড়ি কিছুটা চললেও মানুষের মধ্যে আতঙ্ক ছিল। অন্যান্য হরতালের দিন ঢাকায় বিআরটিসির বাস চালানো হলেও এ অবরোধের সময় তা চোখে পড়েনি।অবরোধের প্রথম দিন ককটেল হামলায় আহত হয়েছিলেন আনোয়ারা বেগম (৫০)। গতকাল ভোরে তিনি ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। ন্যাশনাল ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের রান্নার কাজ করতেন তিনি।সিরাজগঞ্জের বেলকুচি উপজেলার মুকুন্দগাতী বাজারে গতকাল দুপুরে জামায়াত-বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশ-র‌্যাব-বিজিবি ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের ত্রিমুখী সংঘর্ষ হয়। এতে উপজেলার মেটুয়ানী গ্রামের আবদুল জলিল (৩০) ও কল্যাণপুর গ্রামের মাসুম বিল্লাহ (২২) নিহত হন। আহত হন অন্তত ২০ জন।জামায়াতের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, পুলিশের গুলিতে নিহত দুজন তাদের কর্মী। তবে পুলিশ বলছে, এই দুজন কাদের গুলিতে মারা গেছেন, তারা এখনো নিশ্চিত হতে পারেনি। অবরোধের প্রথম দিনেও সিরাজগঞ্জে পুলিশের টিয়ার শেল বুকে লেগে একজন সাইকেল আরোহী মারা যান।অবরোধের প্রথম দিন সাতক্ষীরা সদর উপজেলায় যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের দুই নেতাকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এ ঘটনার পর গভীর রাতে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যরা সদর উপজেলার জামায়াত-অধ্যুষিত আগরদাড়ি গ্রামে আসামি ধরতে গেলে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা মাইকিং করে তাঁদের ওপর হামলা চালান। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা পিছু হটার চেষ্টা করলে গাছের গুঁড়ি দিয়ে রাস্তা অবরোধ করে চারপাশ থেকে হামলা হয়। এরপর পুলিশ ও বিজিবি আত্মরক্ষার্থে গুলি চালালে শামছুর রহমান (৩৫) নামের একজন নিহত হন। জামায়াত তাঁকে নিজেদের কর্মী দাবি করে আজ বৃহস্পতিবার জেলায় অর্ধদিবস হরতাল ডেকেছে।সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সড়কে গাছচাপা পড়ে মারা গেছেন আম্বিয়া খাতুন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার সাতক্ষীরা-যশোর সড়কের যুগীপুকুর এলাকায় গাছ কেটে অবরোধ করা হয়। গতকাল ওই গাছ সরানোর সময় অর্ধেক ঝুলে থাকা একটি ডাল আম্বিয়ার মাথার ওপর পড়লে তিনি মারা যান।চট্টগ্রামের পটিয়ার ফকিরনিরহাট এলাকায় সকাল আটটার দিকে পিকেটাররা ধাওয়ায় টেম্পো উল্টে চালক এরশাদ আলী (২৬) গুরুতর আহত হন। তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হলে দুপুর ১২টার দিকে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।গত রাত সাড়ে আটটার দিকে মাকে নিয়ে বাড়ি ফেরার সময় দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় হাসমতের দোকান এলাকায় ককটেল হামলায় মোহাম্মদ সাহেদ (২০) নামের এক তরুণ গুরুতর আহত হন। চট্টগ্রাম মেডিকেলে নেওয়া হলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। তিনি সাতকানিয়ার কেরানীহাটের একটি আসবাবের দোকানের কর্মচারী ছিলেন। তিনি কেরানীহাট থেকে রিকশাভ্যানে করে মাকে নিয়ে কেওচিয়ার বাড়িতে ফিরছিলেন।চট্টগ্রামে পিকেটারদের লাগানো আগুনে সিএনজিচালিত অটোরিকশার যাত্রী আবদুল আলম দগ্ধ হন। চট্টগ্রামের ওয়াসা মোড়, কাজীর দেউড়ি, এ কে খান মোড়, অলংকার মোড় ও কর্নেলহাটে গতকাল সারা দিন অবরোধকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় নির্বিচারে গাড়ি ভাঙচুর করেন অবরোধকারীরা। এতে পুলিশসহ ২০ জন আহত হন। এ ছাড়া রাতে চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি আমির খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের বাসায় তল্লাশি চালায় পুলিশ।গাজীপুরের কালীগঞ্জের জামালপুর ইউনিয়নের চুপার মোড় এলাকায় দুপুরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের সংঘর্ষে জামালপুর ইউপির সদস্য ও ছাত্রলীগের ইউনিয়ন শাখার সাবেক সভাপতি কামাল হোসেন (৩০) নিহত হন। আহত হয়েছেন অন্তত ১০ জন।টঙ্গীতে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা মিছিল নিয়ে চেরাগআলী এলাকায় গিয়ে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে আগুন জ্বালিয়ে অবরোধের চেষ্টা এবং যানবাহন ভাঙচুর করেন। তাঁরা একটি বাসে আগুন দেন।রাজশাহীতে অবরোধ ও আধা বেলার হরতাল চলাকালে পুলিশের সঙ্গে অবরোধকারীদের সংঘর্ষে পুলিশের তিন সদস্য, সাংবাদিকসহ অন্তত ৫০ জন আহত হন। চাঁদপুরে সংঘর্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। অবরোধকারীরা চাঁদপুর-কুমিল্লা আঞ্চলিক মহাসড়কের বাকিলা থেকে বলাখাল পর্যন্ত প্রায় পাঁচ কিলোমিটার এলাকার কয়েক শ গাছ, গাছের গুঁড়ি ও পল্লী বিদ্যুতের খুঁটি ফেলে রাস্তা অবরোধ করে রাখেন। শহরের মিশন রোড এলাকায় রেললাইনে আগুন এবং চাঁদপুর-লাকসাম রেললাইনের মেহের স্টেশনের এক কিলোমিটার পশ্চিমে ৬০ ফুট দীর্ঘ রেলের একটি পাত তুলে ফেলেন অবরোধকারীরা।নোয়াখালীতে দুপুরে জেলা পুলিশ সুপার আনিসুর রহমান ও তাঁর সঙ্গে থাকা নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মশিউর রহমান, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) নিষ্কৃতি চাকমাকে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। তবে সেটি বিস্ফোরিত হয়নি।অবরোধের কারণে তেঁতুলিয়ার বাংলাবান্ধা, বুড়িমারীসহ বিভিন্ন স্থলবন্দর অচল হওয়ার দশা।গতকাল চট্টগ্রাম, বরিশালের গৌরনদী ও যশোরের অভয়নগরে নির্বাচনী কার্যালয়ে বোমা হামলা, অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটেছে। প্রথম দিনই তিনটি নির্বাচনী কার্যালয়ে হামলার ঘটনা ঘটে।গতকালও সাংবাদিকদের ওপর হামলা করেছেন অবরোধকারীরা। চাঁদপুরে দুই সাংবাদিককে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। বগুড়ার ধুনটে প্রথম আলোর এজেন্টকে মারধর ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।গতকালও রাজধানীতে চোরা-গোপ্তা ককটেল হামলা, যানবাহনে ভাঙচুর-অগ্নিসংযোগ ও পুলিশের ওপর হামলা হয়েছে। গতকাল কিছু দোকানপাট, বিপণিবিতান খুললেও ক্রেতা ছিল খুবই কম। গাবতলী, সায়েদাবাদ ও মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনাল থেকে দূরপাল্লার কোনো বাস ছাড়েনি। কমলাপুর স্টেশন থেকে বেশ কিছু ট্রেন ছেড়ে গেলেও সময়সূচি ঠিক ছিল না। কয়েকটি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে।সারা দিন শান্ত থাকলেও সন্ধ্যায় নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে অবরোধ-সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে। এর আগে সকাল সাড়ে আটটার দিকে বাড্ডার প্রগতি সরণিতে শিবিরের একটি মিছিল থেকে পুলিশের একটি পিকআপ ভাঙচুর করা হয়। বিমানবন্দরে রেলস্টেশনের পাশের আরব-বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি এটিএম বুথ এবং একটি ওষুধের দোকানে ভাঙচুর করেন বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা। ভিক্টোরিয়া পার্ক এলাকায় সকাল নয়টার দিকে অবরোধকারীদের সঙ্গে পুলিশের পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে।চানখাঁরপুল থেকে বকশীবাজার মোড় পর্যন্ত গতকাল সন্ধ্যায় অন্তত ২০টি ককটেলের বিস্ফোরণে পথচারীসহ নয়জন আহত হয়েছেন। তাঁদের ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ককটেল ছুড়ে মারার সময় ফয়েজ আহমেদ নামে এক ব্যক্তিকে পুলিশ আটক করে। রাতে গুলিস্তান ও নিউমার্কেট এলাকায় যাত্রীবাহী বাস ও ট্যাক্সিক্যাবে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। তবে এতে কেউ হতাহত হয়নি।রাত ১০টায় টিকাটুলী মোড়ে হরতাল-সমর্থকদের নিক্ষেপ করা ককটেলের আঘাতে চলন্ত বাসের অন্তত পাঁচজন যাত্রী আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে বাসের চালক হান্নান মিয়াকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।রাতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অবরোধের দ্বিতীয় দিন ৫৮টি গাড়ি ভাঙচুর করা হয়েছে। তবে রাজধানীসহ বিভাগীয় ও জেলা শহরে জীবনযাত্রা প্রায় স্বাভাবিক ছিল।(প্রতিবেদনের তথ্য দিয়েছেন প্রথম আলোর ঢাকা, চট্টগ্রাম, সাতক্ষীরা ও সিরাজগঞ্জের নিজস্ব প্রতিবেদক এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা)।এর আগে একটা কলামে লিখেছিলাম, জ্যাক ক্যালিসের জন্ম যদি ভারতে হতো, শচীন টেন্ডুলকারের মতোই মাতামাতি হতো তাঁকে নিয়ে। ক্যালিসের দুর্ভাগ্য তিনি ভারতে জন্মাননি।টেন্ডুলকারের প্রতি সম্মান রেখেই বলব, রেকর্ডের দিক দিয়ে টেন্ডুলকারের চেয়েও ওপরে জ্যাক ক্যালিস। ওয়ানডে ও টেস্ট দুই ধরনের ক্রিকেটেই ১১ হাজারের ওপরে রান ও ২৫০-এর বেশি উইকেট পাওয়া একমাত্র ক্রিকেটার। এই কীর্তি আর কেউ গড়তে পারবে কি না কে জানে!অলরাউন্ডারদের র‌্যাঙ্কিংয়ে একসময় ক্যালিসের সঙ্গে আমার একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতা ছিল। ‘প্রতিদ্বন্দ্বিতা’ শব্দটা লিখে নিজেরই হাসি পাচ্ছে। আসলে আমি তো কোনো দিন চিন্তাও করিনি, জ্যাক ক্যালিসের আশপাশে আমার নাম লেখা হবে। কোনো ক্রিকেটারই মনে হয় না এভাবে ভাবে। সবাই দেশের জন্য খেলে, নামের জন্য নয়। তবে সবারই লক্ষ্য থাকে ভালো খেলা। কে কতটা ভালো খেলল, তার ওপর নির্ভর করে কার নামটা কোথায় থাকবে। কাজেই শুধু র‌্যাঙ্কিংয়ের কারণে ক্যালিসের সঙ্গে আমার তুলনাটা একটু বাড়াবাড়ি।কলকাতা নাইট রাইডার্সে খেলার সুবাদে ক্যালিসকে কাছ থেকে দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। আগেও বোধ হয় একবার লিখেছিলাম, একই দলে খেললেও ‘হাই-হ্যালো’র বেশি কথা হতো না ওঁর সঙ্গে। খুবই অন্তর্মুখী স্বভাবের মানুষ, নিজেকে গুটিয়ে রাখতেই পছন্দ করেন। তবে সামনে থেকে দেখে যা বুঝেছি, ক্যালিস খুবই সুশৃঙ্খল একজন ক্রিকেটার। কঠোর পরিশ্রম করেন। খেলা-টেলা না থাকলেও জিম-রানিংয়ের মতো নিয়মিত ফিটনেস ট্রেনিংগুলো বাদ দেন না।এমনিতে কথা বলেন একটু কম। তাই বলে টিম মিটিংয়ে একেবারে চুপচাপ বসে থাকেন না। অভিজ্ঞতার ঝাঁপি খুলে দেন সেখানে। সতীর্থদের কেউ চাইলে সাহায্যও করেন। খেলতে খেলতে অভিজ্ঞতা হয়তো সবারই হয়। একদিন আমারও হবে, ড্রেসিংরুমে তখন আমিও হয়তো ক্যালিসের মতো অন্যদের সঙ্গে আমার অভিজ্ঞতা ভাগাভাগি করব। কিন্তু জ্যাক ক্যালিস কি হতে পারব? বোধ হয় না।ব্যাটিং, বোলিং, ফিল্ডিং—সবকিছুতেই ক্যালিসের পারদর্শিতা প্রায় সমান। স্লিপে বিশ্বের অন্যতম সেরা ফিল্ডার ছিলেন তিনি। আর বল হাতে তো তাঁর ওপর ম্যাচের যেকোনো সময় নির্ভর করতে পারতেন অধিনায়ক। যখন ইচ্ছা বল করানো যায়—দলে এমন একজন বোলার থাকলে আর কী লাগে বলেন! আর ব্যাটসম্যান ক্যালিস কেমন ছিলেন সেটা তো আমার না বললেও চলবে। রেকর্ডই কথা বলে তাঁর হয়ে। কথা বলে পৃথিবীজুড়ে ছড়িয়ে থাকা তাঁর অসংখ্য ভক্ত-সমর্থক। সব মিলিয়ে আদর্শ এক অলরাউন্ডারের প্রতিচ্ছবি।আগেই বলেছি, আরেকজন ক্যালিসকে আবার কবে দেখবে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট, সেটা সময়ই বলবে। তবে বর্তমান প্রজন্মের ক্রিকেটাররা তাঁর কাছ থেকে একটা জিনিস নিতে পারে। সেটা হলো শৃঙ্খলা। কঠোর পরিশ্রম করার মানসিকতা। একজন মানুষ নিজেকে আরও ওপরে তুলে নেওয়ার জন্য পরিশ্রম করতে কখনো ক্লান্তিবোধ করেন না, এটাই বড় ব্যাপার। আমার ধারণা, চরিত্রের এই দিকটাই জ্যাক ক্যালিসকে জ্যাক ক্যালিস বানিয়েছে।২০১৫ বিশ্বকাপ খেলার ইচ্ছার কথা জানিয়েছেন। খেললে তাঁকে আরও কিছুদিন দেখার সুযোগ হবে। যদি তা না-ও হয়, ক্রিকেটের অদৃশ্য পাঠ্যবইয়ে জ্যাক ক্যালিসের নামে একটা অধ্যায় সব সময়ই থাকবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের ক্রিকেটারদের পথ দেখাবে সেই অধ্যায়।
ভারতের রাজ্যসভা, লোকসভা ও বিভিন্ন রাজ্যের বিধানসভার সদস্যদের একাংশের বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ, অপহরণ, চাঁদাবাজি, ডাকাতিসহ নানা ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ রয়েছে। সম্প্রতি অ্যাসোসিয়েশন অব ডেমোক্রেটিক রিফরমস নামের একটি সংগঠনের সমীক্ষা প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে।সমীক্ষা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০০৪ সাল থেকে এ পর্যন্ত ভারতের লোকসভা, রাজ্যসভা ও রাজ্য বিধানসভার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছেন ৬২ হাজার ৮৪৭ জন প্রার্থী। এর মধ্যে ১১ হাজার ৩০ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ফৌজদারি অপরাধের অভিযোগ ছিল। তাঁদের মধ্যে আবার পাঁচ হাজার ২৫৩ জনের বিরুদ্ধে ছিল খুন, ধর্ষণ, চাঁদাবাজি, ডাকাতির মতো অভিযোগ।প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, বর্তমানে লোকসভার ৫৪৩ জন সাংসদের মধ্যে ১৬২ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে নানা ফৌজদারি অপরাধের মামলা। রাজ্যসভার ২৩০ জন সাংসদের মধ্যে ৪০ জনের বিরুদ্ধে রয়েছে একই ধরনের মামলা। এ ছাড়া, বিভিন্ন রাজ্য বিধানসভার চার হাজার ৩২ জন বিধায়কের মধ্যে এক হাজার ২৫৮ জনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপরাধে মামলা রয়েছে।বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, আওয়ামী লীগ যে সর্বদলীয় সরকারের কথা বলছে, তা সর্বদলীয় সরকার নয়, ১৪ দলীয় সরকার।আজ মঙ্গলবার নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মির্জা ফখরুল এ আহ্বান জানান।মির্জা ফখরুল বলেন, বিএনপি নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন চায়। এ জন্য কালবিলম্ব না করে নির্দলীয় সরকারের ব্যাপারে আলোচনার জন্য একটি সময় নির্ধারণ করে দিতে তিনি সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।একটি বেসরকারি টিভি চ্যানেলে দুই নেত্রীর কথোপকথনের রেকর্ড প্রচার হওয়ার সমালোচনা করে বিএনপির এই নেতা বলেন, এটি রাজনৈতিক শিষ্টাচারবহির্ভূত ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত, যাতে সংলাপের পরিবেশ সৃষ্টি না হয়। সংলাপ যাতে না হয়, এ জন্য সরকার নাটক তৈরি করছে বলে তিনি অভিযোগ করেন।দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য এম কে আনোয়ার বলেন, তাঁরা সব সময় আলাপ-আলোচনার কথা বলেছেন। তাঁরা অর্থবহ সংলাপ চান, কিন্তু সংলাপের নামে বিভ্রান্তি চান না।আওয়ামী লীগ বলছে, সর্বদলীয় সরকারের বিষয়ে আলোচনা হবে, অন্যদিকে বিএনপি বলছে, নির্দলীয় সরকার ছাড়া আলোচনা হবে না।দুই দলের এই অনড় অবস্থানে সংলাপ সফল হওয়ার কতটুকু সম্ভাবনা—জানতে চাইলে এম কে আনোয়ার বলেন, আওয়ামী লীগ যা বলছে, সেটি সর্বদলীয় সরকার নয়। সরকার প্রধান কে হবেন, তা নিয়ে আলোচনার কথা বলছেন না। তাঁরা বলছেন, শেখ হাসিনাই প্রধান হবেন। তাহলে এটি কীভাবে সর্বদলীয় সরকার হয়?রক্তে ভেসে গেছে মাথা। রাস্তায় পড়ে ছটফট করছিলেন হতদরিদ্র আনোয়ারা বেগম (৫০)। আর আশপাশে জটলা পাকিয়ে তা দেখছিলেন বহু মানুষ। এগিয়ে আসেননি কেউই। কেটে যায় প্রায় ২০ মিনিট। খবর পেয়ে হন্তদন্ত হয়ে স্বজনেরা তাঁকে উদ্ধার করে নিয়ে যান হাসপাতালে। কিন্তু শেষ রক্ষা হয়নি। গতকাল বুধবার ভোরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন তিনি।মঙ্গলবার বিকেলে রাজধানীর খিলগাঁওয়ের গোড়ানের শান্তিপুরে বাসায় ফেরার পথে এক ককটেল বিস্ফোরণে গুরুতর আহত হয়েছিলেন আনোয়ারা। মালিবাগে একটি বেসরকারি ব্যাংকের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের খাবার রান্নাবান্নার কাজ করতেন তিনি।গতকাল বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের মর্গে তাঁর ভাগনে সোবহান ফরাজি প্রথম আলোকে বলেন, ‘খবর পাইয়া দৌড়াতে দৌড়াতে গিয়া দেখি, খালা ছটফট করতাছে। পুলিশি ঝামেলার ভয়ে কেউ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করে নাই।’সাম্প্রতিক হরতাল-অবরোধে প্রাণ গেছে আনেকের। আনোয়ারাকেও যেতে হলো সেই মৃত্যুর মিছিলে। নিহতদের অনেকেই দরিদ্র পরিবারের একমাত্র সম্বল।আনোয়ারাও ছিলেন সে রকমই একজন। তাই গতকাল মর্গে স্বজনদের বুকফাটা আর্তনাদ জানান দেয়, কত ঘোর অন্ধকারে পড়ে গেছে আনোয়ারার পরিবার। সাত-আট বছর আগে মারা গেছেন আনোয়ারার স্বামী দেলোয়ার কাজী। দুই ছেলে ও এক মেয়ে তাঁদের। বড় ছেলে মো. আলম ও মেয়ে নাসিমা বেগমের সন্তানকে নিয়ে শান্তিপুরে এক টিনশেডের বাসায় থাকতেন আনোয়ারা। আলম আগে রিকশা চালাতেন, এখন অসুস্থ। আলমের স্ত্রী-সন্তান থাকেন খুলনায়। দুই নাতির লেখাপড়ার খরচ তো ছিলই, আলমের সংসারের ভরণপোষণও করতেন আনোয়ারা।কাঁদতে কাঁদতে মেয়ে নাসিমা বলেন, আনোয়ারা মাসে সাড়ে তিন হাজার টাকা বেতন পেতেন। ১২০০ টাকা বাসা ভাড়া দেওয়ার পর নিজের কাছে কিছু রাখতেন। বড় ছেলের সংসারের জন্য পাঠাতেন এক হাজার টাকা। নাসিমা বলেন, ব্যাংকে কর্মচারীদের খাবারের অবশিষ্ট থাকলে তিনি তা বাসায় এনে ছেলে ও নাতিনের সঙ্গে ভাগ করে খেতেন। মঙ্গলবারও খাবার নিয়ে বাসায় ফিরছিলেন তিনি।এদিকে মর্গ থেকে ঢাকা মেডিকেলের বার্ন ইউনিটে গিয়ে দেখা গেছে একই রকম আর্তনাদ। আইসিইউর সামনে বিকেলে কথা হয় সোহেল নামের এক লেগুনাচালকের সঙ্গে। তাঁর ভাই মোজাম্মেল হক সেখানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। চোখ মুছতে মুছতে সোহেল বলেন, ‘মাদারটেক থেইকা যাত্রী নিয়া রামপুরায় আসছিল মোজাম্মেল। হেরপর লেগুনা থামাইয়া আগুন দেয়। হাসপাতালে মোজাম্মেল বলছে, পেট্রল ঢালার পর সে বাইর হইতে চাইছিল। কিন্তু আগুন দেওয়া পোলাপাইনগুলা দরজা আটকাইয়া ধরে রাখছিল বইলা সে বাইর হতে পারে নাই।’ গত মঙ্গলবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে রাজধানীর রামপুরার দক্ষিণ বনশ্রী এলাকায় অবরোধ সমর্থনকারীরা লেগুনায় আগুন ধরিয়ে দিলে চালক মোজাম্মেলের শরীরের ৬০ ভাগ পুড়ে যায়। বার্ন ইউনিটের আইসিইউতে গতকাল রাত পৌনে একটার দিকে লেগুনাচালক মোজাম্মেল মারা যান।আইসিইউর পাশে একটি কক্ষে দগ্ধ অবস্থায় হাঁপাচ্ছিলেন সিএনজিচালিত অটোরিকশার চালক সাবেদ আলী। পাশে আতঙ্কিত স্ত্রী আলেয়া খাতুন। গত মঙ্গলবার দুপুরে রাজধানীর ইস্টার্ন প্লাজার সামনে তাঁর অটোরিকশায় আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। সাবেদ বলেন, ‘বসলেও ব্যথা, শুইলেও ব্যথা। কী অপরাধ করছিলাম, ভাই?’ স্ত্রী আলেয়া বললেন, ‘এক হাজার টাকা ধার কইরা হাসপাতালে ছুইটা আসছি। এহন সব শেষ। কী করমু, পোলাপাইনরে কী খাওয়ামু, জানি না।’আলেয়ার মতো সন্তানদের ভরণপোষণের চিন্তায় আছেন নাসিমা বেগম। গত সোমবার সন্ধ্যায় কুমিল্লায় সিএনজিতে দেওয়া আগুনে পুড়ে যায় তাঁর স্বামী চালক মো. রুবেলের শরীর। কুমিল্লায় বাসায় তিন সন্তানকে রেখে স্বামীকে নিয়ে হাসপাতালে এসেছেন তিনি। পাশেই শরীরের জ্বালাপোড়ায় চিৎকার করতে করতে রাজনীতিকে গালিগালাজ করছিলেন রুবেল। প্রথম আলোকে বললেন, ‘গত বছর ভোট দিছিলাম। কেউ ভালো না। আগে সুস্থ হইয়া লই, আর কেউরে ভোট দিমু না।’পিটার গেরহার্ড ভিন্টসেন্ট ফন ডার বিজলি। ব্যারি অ্যান্ডারসন রিচার্ডস। ব্রায়ান লি আরভিন।মিলটা হলো, তিনজনই দক্ষিণ আফ্রিকান। তিনজনই নিজেদের শেষ টেস্টে সেঞ্চুরি পেয়েছেন। এবং তিনজনের কেউই জানতেন না ওই ম্যাচটাই তাঁদের ক্যারিয়ারের শেষ আন্তর্জাতিক ম্যাচ হয়ে থাকবে।ফন ডার বিজলির ক্যারিয়ার সংক্ষিপ্ত করেছে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ। বর্ণবাদের কারণে দক্ষিণ আফ্রিকা একঘরে থাকায় বাড়তে পারেনি রিচার্ডস ও আরভিনের ক্যারিয়ার।হঠাৎ ইতিহাসের ঝাঁপি খুলে বসার কারণ জ্যাক ক্যালিস। ডারবান টেস্টের প্রথম ইনিংসে আজ আর মাত্র ২২ রান পেলেই যে ইতিহাস গড়বেন দক্ষিণ আফ্রিকান অলরাউন্ডার। ক্যারিয়ারের শেষ টেস্টে সেঞ্চুরি করতে আর এই কয়টা রানই তাঁর দরকার। পূর্বসূরিরা না চাইতেই শেষ টেস্টে সেঞ্চুরির তালিকায় বসেছেন, ক্যালিস তো টেস্ট ছাড়ছেন ঘোষণা দিয়েই। অবসরের ঘোষণা দিয়ে টেস্ট সেঞ্চুরি সর্বশেষ সেই ১৯৮৪ সালে করেছেন অস্ট্রেলিয়ার গ্রেগ চ্যাপেল।দক্ষিণ আফ্রিকা ব্যাটিংয়ে নেমে গিয়েছিল আগের দিনই। বিনা উইকেটেই তুলে ফেলেছিল ৮২ রান। ক্যালিসকে ব্যাটিং করতে দেখতে অবশ্য কাল বেশি সময় অপেক্ষা করতে হয়নি কিংসমিডের দর্শকদের। অধিনায়ক গ্রায়েম স্মিথ ও হাশিম আমলা দ্রুতই ফিরে গেলে দিনের ১৩তম ওভারেই ক্রিজে ক্যালিস। পুরো গ্যালারি দাঁড়িয়েই অভ্যর্থনা জানিয়েছে তাঁকে, গার্ড অব অনার দিয়েছেন প্রতিপক্ষ ভারতের খেলোয়াড়েরাও। কোনো বল খেলার আগেই অন্যপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আউট হতে দেখলেন ফিফটি পাওয়া আলভিরো পিটারসেনকে। পরপর দুই বলে ২ উইকেট, ১১৩ রানে স্বাগতিকদের ৩ উইকেট তুলে নিয়ে ভারত প্রবলভাবেই তখন ম্যাচে।ক্যালিস তাঁর মতোই খেলা শুরু করলেন এরপরই। এবি ডি ভিলিয়ার্সকে নিয়ে ১২৭ রানের জুটি, ক্যালিস থাকলেন সহযোগীর ভূমিকায়, ধৈর্যের প্রতিমূর্তি হয়ে। রানের চাকা ঘোরানোর দায়িত্বটা ভালোভাবেই পালন করা ডি ভিলিয়ার্স ১১৭ বলে ৭৪ রান করে রবীন্দ্র জাদেজার তৃতীয় শিকার। এই নিয়ে টানা ১০ ম্যাচে কমপক্ষে একটি ফিফটি ছাড়ানো ইনিংস খেললেন ডি ভিলিয়ার্স।ডি ভিলিয়ার্সের বিদায়ের পর ডুমিনিকে নিয়েও ৫৮ রানের জুটি ক্যালিসের। ১৫১ বলে ক্যারিয়ারের ৫৯তম ফিফটি ছুঁয়েছেন টেস্টে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে সর্বোচ্চ রানের মালিক। বৃষ্টিতে অপমৃত্যু ঘটা দিনটা ৫ উইকেটে ২৯৯ রানে শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এর আগে ১০২ বার ফিফটি পেরিয়ে ৪৪ বারই তিন অঙ্কের দেখা পাওয়া ক্যালিস কি আজ পাবেন তাঁর ৪৫তম সেঞ্চুরি? তথ্যসূত্র: ক্রিকইনফো, টেন ক্রিকেট।
বর্ণবাদের বিরুদ্ধে ফিফার কঠোর অবস্থানের আরও একটি উদাহরণ এটি। ইউক্রেনের দর্শকদের বর্ণবাদী মন্তব্যে ক্ষুব্ধ ফুটবলের সর্বোচ্চ সংস্থা এবার অভিনব এক শাস্তি প্রয়োগ করতে যাচ্ছে। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ইউক্রেনকে পরবর্তী হোম ম্যাচটি খেলতে হবে দর্শকবিহীন পরিবেশে। খেলা চলাকালে প্রতিপক্ষ দলের খেলোয়াড়দের বর্ণবাদী মন্তব্যে জর্জরিত করা ইউক্রেনীয় দর্শকদের কাছেও এই সিদ্ধান্তের মাধ্যমে বার্তা পৌঁছে দেওয়া হলো, ‘আন্তর্জাতিক ম্যাচ উপভোগ করার মতো মানসিকতা এখনো গড়ে ওঠেনি তাদের মধ্যে।’৬ সেপ্টেম্বর ইউক্রেনের এলভিভে দুর্বল সান মারিনো খেলতে নেমেছিল স্বাগতিক দলের বিপক্ষে। ম্যাচে ইউক্রেন খুব সহজেই ৯-০ গোলে জয়লাভ করলেও দর্শকদের তেতো বাক্যবাণের শিকার হয় অতিথি দল। বর্ণবাদী মন্তব্যে প্রতিপক্ষকে উত্ত্যক্ত করার ব্যাপারটি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে ফিফা গতকাল শুক্রবার ইউক্রেনের দর্শকদের বিরুদ্ধে এই শাস্তি ঘোষণা করে। একই সঙ্গে ২০১৮ সালের রাশিয়া বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের কোনো ম্যাচের ভেন্যু হওয়ারও যোগ্যতা হারিয়েছে এলভিভের এই স্টেডিয়াম। পাশাপাশি ইউক্রেন ফুটবল ফেডারেশনকে এই ঘটনায় জরিমানা গুনতে হবে প্রায় ৫০ হাজার ডলার।ইউক্রেনের পাশাপাশি একই শাস্তি পেতে হচ্ছে পেরুকেও। ২০১৪ সালের ব্রাজিল বিশ্বকাপ থেকে ইতিমধ্যেই ছিটকে যাওয়া পেরুকে বাছাইপর্বের পরবর্তী হোম ম্যাচটি খেলতে হবে দর্শকবিহীন পরিবেশে। সূত্র: রয়টার্স।হলিউডের ডাকসাইটে অ্যাকশন তারকা হিসেবেই সুপরিচিত সিলভেস্টার স্ট্যালোন। দুর্দান্ত মারকুটে সব অ্যাকশন দৃশ্যে অভিনয়ের পাশাপাশি চলচ্চিত্র পরিচালনা, প্রযোজনা ও চিত্রনাট্য লেখার কাজও করেছেন এ র্যাম্বো তারকা। এবার চিত্রশিল্পী স্ট্যালোনের পরিচয় মিলল। তাঁর আঁকা ৩০টি চিত্রকর্ম নিয়ে ‘সিলভেস্টার স্ট্যালোন. আর্ট. ১৯৭৫-২০১৩’ শীর্ষক মাসব্যাপী চিত্রকর্ম প্রদর্শনীর আয়োজন করেছে সেন্ট পিটার্সবার্গে অবস্থিত দ্য রাশিয়ান মিউজিয়াম।চলচ্চিত্র জগতে যাত্রা শুরুর আগে ছবি আঁকার ওপর প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা নিয়েছিলেন স্ট্যালোন। চার দশক ধরেই নিভৃতে ছবি এঁকে চলেছেন ৬৭ বছর বয়সী এ তারকা। এই দীর্ঘ সময়ে অনেক ছবিই এঁকেছেন তিনি। সেখান থেকে নির্বাচিত ৩০টি ছবি নিয়ে এ প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন।সম্প্রতি প্রদর্শনীটির উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে স্ট্যালোন বলেন, ‘আমি কল্পনাও করিনি দ্য রাশিয়ান মিউজিয়ামে আমার আঁকা ছবি প্রদর্শিত হবে। ছবি আঁকা আমার একান্ত ব্যক্তিগত একটি বিষয়। এটা এমন একটি কাজ, যেখানে মন যা চায় সেটাই করতে পারি। সুযোগ থাকলে অভিনয়ের পরিবর্তে ছবি আঁকাকেই পেশা হিসেবে বেছে নিতাম। আমার ধারণা, অভিনেতার চেয়ে চিত্রশিল্পী হিসেবেই আমার দক্ষতা বেশি। আশা করছি, আমার আঁকা ছবিগুলো আপনারা পছন্দ করবেন।’উজ্জ্বল রঙে আঁকা স্ট্যালোনের চিত্রকর্ম সম্পর্কে দ্য রাশিয়ান মিউজিয়ামের পরিচালক ভ্লাদিমির গাসেভ মন্তব্য করেছেন, ‘স্ট্যালোনের চিত্রকর্মগুলোতে একজন আবেগপ্রবণ মানুষের চরিত্র স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। কোনোভাবেই এগুলোকে আনাড়ি শিল্পীর কাজ বলা যায় না। প্রকৃত চিত্রকর্ম এগুলো। দ্য রাশিয়ান মিউজিয়াম কখনোই আনাড়ি কিংবা দুর্বল শিল্পীর ছবি প্রদর্শন করে না।’বিসিবির পরিচালনা পর্ষদের নির্বাচনের পর পরই সভা করেছিলেন নবনির্বাচিত বিসিবি পরিচালকেরা। তবে বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান সেটিকে বোর্ড সভা ধরতে রাজি নন। পরিচালনা পর্ষদের কালকের সভার পর বললেন, ‘ওই মিটিংটা মূলত দায়িত্ব হস্তান্তরের জন্যই হয়েছিল। আনুষ্ঠানিকভাবে আমরা আজই প্রথম সভা করলাম।’আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ আলোচ্যসূচির মধ্যে কালকের সভায় বিসিবির স্থায়ী কমিটিগুলো নতুন করে বিলি-বণ্টনেরও ব্যাপার ছিল। কিন্তু বিশেষ কয়েকটি কমিটির প্রধান হওয়ার ‘প্রার্থী’ একাধিক হয়ে যাওয়ায় বংলাদেশের রীতি অনুযায়ী সিদ্ধান্ত নেওয়ার ভারটা সভাপতির ওপরই দিয়ে দেন পরিচালকেরা। বিকেলে সভা শেষ হওয়ার পর সন্ধ্যার মধ্যেই সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বোর্ড সভাপতির ঠিক করা কমিটি প্রধানদের নাম। তবে দায়িত্বটা আপাতত ছয় মাস মেয়াদে। এরপর কমিটি প্রধানদের পারফরম্যান্স মূল্যায়ন করে পুনর্বিন্যাসও হতে পারে।নির্বাচিত পরিচালনা পর্ষদে জাতীয় দলের তিন সাবেক অধিনায়কদের মধ্যে আকরাম খানকে দেওয়া হয়েছে ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের দায়িত্ব, নাঈমুর রহমান ও খালেদ মাহমুদকে গেম ডেভেলপমেন্ট ও বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট কমিটির। পুরোনো বোর্ড পরিচালকদের মধ্যে এনায়েত হোসেন, আহমেদ সাজ্জাদুল আলম ও মাহবুবুল আনাম কোনো কমিটিরই দায়িত্ব পাননি। তবে সূত্র জানিয়েছে, এই তিনজনের মধ্যে দুজন সহসভাপতি হতে যাচ্ছেন, অন্যজন হবেন ওয়ার্কিং কমিটির প্রধান। দুই সহসভাপতি নির্বাচনের প্রক্রিয়া নিয়েও আলোচনা হয়েছে কালকের সভায়। দুটি সহসভাপতির পদ পেতে ইচ্ছুক পরিচালক দুজনের বেশি হলে ৪ ডিসেম্বর নির্বাচন হবে ওই দুটি পদে। আজ বিকেলের মধ্যে সেই ইচ্ছার কথা আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে হবে বোর্ডকে।প্রধান নির্বাচকের শূন্য পদ পূরণের ব্যাপারে সভায় আলোচনা হলেও কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। বোর্ড সভাপতি বলেছেন, ‘বেশ কয়েকটি নাম আলোচনায় এসেছে। ফারুক, নান্নু (মিনহাজুল আবেদীন), সুমন (হাবিবুল বাশার), কেউ কেউ পাইলটের (খালেদ মাসুদ) নামও বলেছেন। এই সিদ্ধান্তটি সবাই আমার ওপর ছেড়ে দিয়েছেন। আশা করছি, রোববারের মধ্যে এটা ঠিক করে ফেলব।’ এই নামগুলোর মধ্যে ফারুকের পক্ষেই বোর্ডে ‘জনমত’ বেশি বলে জানা গেছে।জাতীয় দলের প্রস্তুতি নিয়েও আলোচনা হয়েছে সভায়। সিদ্ধান্ত হয়েছে প্রিমিয়ার লিগ শেষে কমপক্ষে এক সপ্তাহের বিরতির পর একটি টি-টোয়েন্টি টুর্নামেন্ট আয়োজনের। এটা হতে পারে জাতীয় ও ‘এ’ দলের মধ্যে সিরিজ, অথবা তৃতীয় একটি দলকে সম্পৃক্ত করে টুর্নামেন্টও। এ ছাড়া আগামী ২৫ ডিসেম্বর থেকে শুরু হবে জাতীয় ক্রিকেট লিগ।সংবাদ সম্মেলনের শেষ দিকে ‘বিশেষ দ্রষ্টব্যের’ মতোই টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের টিকিটের প্রসঙ্গ তুললেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান। মোট টিকিটের ৭০ শতাংশ অনলাইনে বিক্রি হয়েছে জানিয়ে তিনি বললেন, ‘গতবার (২০১১ বিশ্বকাপ) আমরা (বিসিবি) টিকিট বিক্রি করেছিলাম। এবার আইসিসি করছে। টিকিট বিক্রি হোক বা না হোক, চুক্তি অনুযায়ী আইসিসি আমাদের টিকিট বাবদ দুই মিলিয়ন ডলার দেবে।’ অন্যান্য সময় বিসিবির কাছ থেকে সৌজন্য টিকিট পান অনেকেই। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে সেটির ব্যতিক্রম হতে যাচ্ছে, ‘সব সময় আমরা কিছু ফ্রি টিকিট দিই। বোর্ড পরিচালক, কাউন্সিলর, ক্লাব, ক্রিকেটার, সরকারি সংস্থা, মন্ত্রী, সংসদ সদস্য এবং ভিআইপিরা তা পেয়ে থাকেন। কিন্তু এবার কোনো ফ্রি টিকিট নেই। আইসিসির কাছ থেকে আমরা যত টিকিটই পাই, সেখান থেকে সবাইকে তা কিনে নিতে হবে।’কে কোন কমিটির প্রধানক্রিকেট পরিচালনা: আকরাম খান, অর্থবিষয়ক: আফজালুর রহমান, শৃঙ্খলা: শেখ সোহেল, গেম ডেভেলপমেন্ট: খালেদ মাহমুদ, টুর্নামেন্ট: গাজী গোলাম মুর্তজা, বয়সভিত্তিক টুর্নামেন্ট: নাঈমুর রহমান, মাঠ: লোকমান হোসেন ভূঁইয়া, ফ্যাসিলিটিজ: তানজিল চৌধুরী, আম্পায়ার্স: নাজমুল করিম, বিপণন ও বাণিজ্য: কাজী ইনাম আহমেদ, মেডিকেল: হানিফ ভূঁইয়া, দরপত্র ও ক্রয়: আনোয়ারুল ইসলাম, মিডিয়া ও যোগাযোগ: জালাল ইউনুস, নিরীক্ষা: শফিউল আলম চৌধুরী, মহিলা ক্রিকেট: এম এ আউয়াল চৌধুরী, লজিস্টিকস ও প্রটোকল: ইসমাইল হায়দার মল্লিক, নিরাপত্তা: মনজুর কাদের, সিসিডিএম: আ জ ম নাসির।এই আধুনিক যুগে তুকতাকে কেউ কি আর বিশ্বাস করে? হোসে মরিনহোও নিশ্চয়ই করেন না। তবে এক দিনের জন্য হলেও কোনো তুকতাকের ব্যাপারে হয়তো ভাবছেন চেলসির কোচ। লুইস সুয়ারেজকে থামাতে হলে এখন এটা ছাড়া উপায় কী!কথাটা অবশ্য মুখ ফুটে বলেননি। তবে যা বলেছেন তাতেই বোঝা যায় সুয়ারেজ না থাকলে কতটা নির্ভার হতেন। প্রতিপক্ষ খেলোয়াড়ের অমঙ্গল কামনা করা ফুটবল শিষ্টাচারের মধ্যে পড়ে না। কিন্তু সেই খেলোয়াড়টি যদি হন সুয়ারেজ, তখন মরিনহোও বলতে বাধ্য হন, ‘আশা করি সুয়ারেজ হালকা চোট পেয়েছে। আমি চাই না সে বড় চোটে পড়ুক, শুধু চাইছি হালকা একটা চোট, যাতে চার দিনের জন্য সে খেলতে না পারে।’সন্দেহ নেই, এটা রসিকতা। কিন্তু হঠাৎই সুয়ারেজের ভাবনায় আকুল কেন চেলসি কোচ? কেননা আজই প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে দুর্দান্ত ফর্মে থাকা সুয়ারেজের লিভারপুলের মুখোমুখি হচ্ছে চেলসি।আজ স্ট্যামফোর্ড ব্রিজের ম্যাচটাকে আলাদা তাৎপর্য দিচ্ছে আট মাস আগের এক ঘটনা। অ্যানফিল্ডে সেদিনের ম্যাচটা ড্র হয়েছিল ২-২ গোলে, সুয়ারেজ গোলও করেছিলেন। কিন্তু অন্য একটা কলঙ্কিত ঘটনার জন্যই কেউ মনে রাখেনি গোলটা। চেলসির ব্রানিস্লাভ ইভানোভিচের হাতে কামড় দিয়ে দিয়েছিলেন। পরে ১০ ম্যাচের নিষেধাজ্ঞাও কাটিয়েছেন সুয়ারেজ। এ মৌসুমে লিগের প্রথম পাঁচটি ম্যাচ খেলতে পারেননি সে কারণেই।নিন্দার নরক থেকে সুয়ারেজ এখন নন্দিত স্বর্গে। লিগে ১৩ ম্যাচে করেছেন লিগ সর্বোচ্চ ১৯ গোল। তাঁর সবচেয়ে কাছাকাছি থাকা ম্যানচেস্টার সিটির সার্জিও আগুয়েরোর গোল ৬টি কম!লিভারপুল কোচ ব্রেন্ডন রজার্সের জন্য যেটা ভরসা, মরিনহোর জন্য সেটাই অস্বস্তি। গোল নিয়ে রজার্সকে খুব একটা ভাবতে হচ্ছে না, অথচ চেলসি স্ট্রাইকাররা গোল করা যেন ভুলেই গেছেন। চেলসির তিন স্ট্রাইকার—ফার্নান্দো তোরেস, স্যামুয়েল ইতো ও ডেম্বা বার মিলিত গোল মাত্র ৫টি। মরিনহো তবু দলে স্ট্রাইকারদের অবদানটাকে খাটো করে দেখেন না, ‘তারা সব সময় দলকে কিছু না-কিছু দেয়। হ্যাঁ, গোল তারা খুব বেশি পাচ্ছে না। কিন্তু তারা খাটছে।’লিভারপুলের অবশ্য কঠিন সময় যাচ্ছে এখন। আগের ম্যাচেই ম্যানচেস্টার সিটির সঙ্গে খেলে আজ চেলসির মুখোমুখি। রজার্স বললেন, ‘আমাদের জন্য এর চেয়ে কঠিন আর হতে পারত না। আমরা সম্ভবত লিগের সবচেয়ে শক্তিশালী দুই দলের সঙ্গে খেলছি।’চেলসির জন টেরি আজ একটা মাইলফলক ছোঁবেন। রন হ্যারিস, পিটার বোনেত্তি ও ফ্রাঙ্ক ল্যাম্পার্ডের পর চতুর্থ খেলোয়াড় হিসেবে চেলসির হয়ে ৬০০তম ম্যাচ খেলছেন ক্লাব অধিনায়ক। এএফপি।
ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা বন্ধ করার পক্ষে মত দিয়েছেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ।টাইমস অব ইন্ডিয়া অনলাইনে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, গতকাল শুক্রবার জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে দেওয়া ভাষণে এমন মতামত জানান পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী।নওয়াজ বলেন, ‘দুই দেশ পারমাণবিক অস্ত্রের প্রতিযোগিতা করতে গিয়ে ব্যাপক সম্পদ অপচয় করেছি।’আগামীকাল রোববার ভারতের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে নওয়াজের বৈঠক হওয়ার কথা। এই বৈঠকের আগে ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নয়ন প্রসঙ্গেও কথা বলেন নওয়াজ।পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনমোহনের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় আছেন তিনি। একই সঙ্গে নওয়াজ জানান, ভারতের সঙ্গে দৃঢ় সম্পর্ক স্থাপনে আগ্রহী তিনি।আলোচনার মাধ্যমে কাশ্মীরসহ দুই দেশের মধ্যে বিরাজমান সব সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে মত দেন নওয়াজ।জম্মু ও কাশ্মীর সমস্যার সমাধানে জাতিসংঘ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে বলে মনে করেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। এ ছাড়া, ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক সম্পর্ক আরও জোরদার করার ব্যাপারেও আগ্রহ প্রকাশ করেন নওয়াজ।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া, কুষ্টিয়ার কুমারখালী ও পাবনার ঈশ্বরদী উপজেলার মুলাডুলিতে নাশকতার আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। আখাউড়ায় সকাল আটটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা, কুমারখালীর পৌর এলাকায় সকাল ১০টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা ও মুলাডুলিতে সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত এ আদেশ বহাল থাকবে।আমাদের আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:আখাউড়া: হরতালের পক্ষে বিএনপি ও বিপক্ষে আওয়ামী লীগ মাঠে নামছে—এমন খবরে আজ সকাল আটটায় আখাউড়া পৌর শহরে ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। এ তথ্য প্রচার করতে প্রশাসনের পক্ষে শহরে মাইকিং করা হয়। পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপজেলা শহরে সব ধরনের মিছিল, সভা ও সমাবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।এ তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. খুরশীদ শাহরিয়ার প্রথম আলো ডটকমকে জানান, অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা এড়াতে শহরে ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে।কুষ্টিয়া: কুমারখালীর ভারপ্রাপ্ত ইউএনও আরিফ উজ জামান প্রথম আলো ডটকমকে জানান, নাশকতার আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়েছে। এদিকে হরতালের সমর্থনে সকাল সাড়ে ১০টার দিকে কুষ্টিয়া শহরের থানার পাশে ককটেল বিস্ফোরণ ও সড়কে পেট্রল ঢেলে আগুন দিয়ে পালিয়ে যায় পিকেটাররা। এতে কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। সকালে কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সামনে খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে ছাত্রশিবির। পুলিশ গেলে তারা পালিয়ে যায়।ঈশ্বরদী (পাবনা): ঈশ্বরদীর ইউএনও অফিস সূত্রে জানা যায়, আজ সকাল ১০টায় মুলাডুলি রেলগেটসংলগ্ন এলাকায় স্থানীয় বিএনপি-জামায়াত সমাবেশের আয়োজন করে। একই সময় একই জায়গায় মুলাডুলি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে সভা-সমাবেশ করার ঘোষণা দেওয়া হয়। এ কারণে রাজনৈতিক সহিংস ঘটনার আশঙ্কায় ঈশ্বরদীর ইউএনও মোহাম্মদ সানোয়ার হোসেন মুলাডুলির সমগ্র ইউনিয়ন, ঈশ্বরদী-নাটোর মহাসড়ক ও দাশুড়িয়া ট্রাফিক মোড় পর্যন্ত ১৪৪ জারি করেন। গতকাল সোমবার রাতে এই আদেশ জারি করা হয়।ঘরোয়া ফুটবলে গত মৌসুমে ট্রেবলজয়ী শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের নিজস্ব কোনো ঠিকানা ছিল না এত দিন। প্রতিষ্ঠার পর থেকেই ক্লাবটিকে যাযাবরের মতো ঘুরতে হয়েছে এখানে-সেখানে। কখনো উত্তরায়, কখনো মোমেনবাগ। গত মৌসুমে তাদের ক্লাব তাঁবু ছিল চানখাঁরপুলে। অনুশীলন করতে হয়েছে বুয়েট মাঠে। অবশেষে স্থায়ী ক্লাব প্যাভিলিয়ন নির্মাণের জন্য সরকারের কাছ থেকে একখণ্ড জমি পেল শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্র।কমলাপুরে বাংলাদেশ রেলওয়ের ১৫ কাঠা জমি জাতীয় ক্রীড়া পরিষদ ও শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের নামে বরাদ্দ দেওয়া হয়। তবে শর্ত জুড়ে দেওয়া হয়েছে, জমির সেলামি বাবদ প্রতিবছর প্রায় সাড়ে ১০ লাখ টাকা রেলওয়ের কোষাগারে জমা দিতে হবে। কমলাপুরে একটি ইনডোর স্টেডিয়াম তৈরির জন্য রেলওয়ের কাছে ১০ বিঘা জমি চেয়েছিল ক্রীড়া পরিষদ। কিন্তু রেলওয়ে দুটি সংস্থার নামে বরাদ্দ দিয়েছে মাত্র ১৫ কাঠা। ক্রীড়া পরিষদ তাদের চাহিদামতো জমি না পাওয়ায় ১৫ কাঠা জায়গায়ই শেখ রাসেলকে বরাদ্দ দিতে রেল মন্ত্রণালয়কে চিঠি দেয়। সে অনুসারে মন্ত্রণালয় শেখ রাসেলকে এককভাবে ১৫ কাঠা জায়গা দিচ্ছে। বিষয়টি স্বীকার করে শেখ রাসেলের সভাপতি নুরুল আলম চৌধুরী কাল বলেন, ‘বরাদ্দপত্র পেয়েছি। এখন টাকা জমা দিলেই জমি আমাদের বুঝিয়ে দেওয়া হবে। যদিও জমির পরিমাণ কম, তার পরও শেখ রাসেল ক্রীড়াচক্রের একটি স্থায়ী ঠিকানা তো হচ্ছে। এতদিন পর একখন্ড জমি পেয়ে খুবই ভালো লাগছে আমাদের।’নবম সংসদ নির্বাচনের আগে বাড়ি-গাড়ি ছিল না। নিজের আয় ও সম্পদ-সম্পত্তি ছিল সামান্য। পাঁচ বছরে কিনেছেন কোটি টাকার বাড়ি-গাড়ি। নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামাতেই এ তথ্য দিয়েছেন মাগুরা-২ (শালিখা, মহম্মদপুর ও সদরের একাংশ) আসনের সাংসদ বীরেন শিকদার।২০০৮ সালে নির্বাচন কমিশনে দাখিল করা হলফনামায় বীরেন শিকদার উল্লেখ করেন, আইন পেশা থেকে তিনি বছরে আয় করেন এক লাখ ৮০ হাজার টাকা। পৈতৃক সূত্রে পাওয়া ২০ বিঘা জমি থেকে বছরে ৫২ হাজার এবং বাড়ি ও দোকানভাড়া থেকে ১০ হাজার টাকা আয় করেন। দুই ভাই বিমলেন্দু শিকদার ও বিবেকানন্দ শিকদারের বার্ষিক আয় যথাক্রমে এক লাখ ৯৫ হাজার ও এক লাখ ৭৭ হাজার ৭০০ টাকা। অস্থাবর সম্পদের মধ্যে নিজের নামে দুই লাখ ও স্ত্রীর নামে ৫০ হাজার টাকা, ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে নিজের নামে ৬৫ হাজার ও স্ত্রীর নামে ৪১ হাজার ৬৯০ টাকা থাকার কথা উল্লেখ করেছিলেন। নিজের কোনো মোটরযান না থাকলেও বিমলেন্দু শিকদারের ৮৫ হাজার টাকা দামের একটি পুরোনো জিপগাড়ি ও বিবেকানন্দ শিকদারের এক লাখ টাকা দামের একটি মোটরসাইকেল রয়েছে। স্থাবর সম্পদের মধ্যে ছিল ২৫ শতাংশ কৃষিজমি। এ ছাড়া ১০ শতাংশ যৌথ মালিকানার অকৃষি জমি ছিল। মাগুরা শহরে যৌথ মালিকানার দ্বিতল বাড়ি ও শালিখার সিংড়া গ্রামে আরেকটি পাকা বাড়ি রয়েছে।এবারের হলফনামায় বীরেন শিকদার উল্লেখ করেন, আগের সম্পদ-সম্পত্তি ছাড়াও তিনি ঢাকার উত্তরায় এক কোটি পাঁচ লাখ টাকায় একটি ফ্ল্যাট কিনেছেন। শুল্কমুক্ত সুবিধায় টয়োটা গাড়ি কিনেছেন ৬৫ লক্ষাধিক টাকায়। ৭০ শতাংশ যৌথ মালিকানার জমি হয়েছে। তবে জমিটি কোথায় বা দাম কত, তা উল্লেখ করা হয়নি। তবে এবার তিনি তাঁর ও তাঁর ওপর নির্ভরশীলদের আয় ও সম্পত্তির তথ্য দেননি।হলফনামায় উল্লেখ করা সম্পত্তি ছাড়াও বীরেন শিকদারের আরও সম্পদ রয়েছে। শহরের এমআর রোডে শিকদার মেডিকেল নামের ওষুধের দোকান ও সনোপ্লাস ডায়াগনস্টিক সেন্টার রয়েছে। রয়েছে ইউনিওয়ার্ল্ড বিডি লিমিটেড নামের একটি গার্মেন্টস। এ তিনটি প্রতিষ্ঠান দেখাশোনা করেন বিবেকানন্দ শিকদার ও বিপুল শিকদার। শহরের সৈয়দ আতর আলী সড়কে রেড স্টাইল নামে বড় একটি তৈরি পোশাকের দোকান রয়েছে সাংসদের ছেলের। বিমলেন্দু শিকদার পাঁচ বছরে কয়েক কোটি টাকার ঠিকাদারি কাজ করেছেন।এ বিষয়ে বীরেন শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ঋণ নিয়ে তিনি গাড়ি ও ফ্ল্যাট কিনেছেন। ভাইয়েরা আলাদাভাবে ব্যবসা করেন, করও দেন। তাই তাঁদের বিষয়টি হলফনামায় উল্লেখ করা হয়নি।অনুসন্ধানে দেখা গেছে, বীরেন শিকদার নিয়ম ভেঙে চারটির জায়গায় নয়টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি হয়েছেন। গত পাঁচ বছরে এসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ১৭৩ জন শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগ দেওয়ার তথ্য জানা গেছে। প্রতিটি নিয়োগে চার থেকে নয় লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে।এ ছাড়া সাংসদের ভাই বিমলেন্দু শিকদার দুটি কলেজসহ পাঁচটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি। এখানে গত পাঁচ বছরে কয়েক কোটি টাকার নিয়োগ-বাণিজ্য হয়েছে।জানতে চাইলে বীরেন শিকদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘নিয়োগের জন্য একটি কমিটি থাকে। এককভাবে নিয়োগ দেওয়ার কোনো সুযোগ আমার নেই।’
নোয়াখালীর হাতিয়া পৌর এলাকায় আজ শনিবার দুপুর ১২টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে স্থানীয় প্রশাসন। দুপুরে উপজেলা পরিষদের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে আয়োজিত জনসভাকে কেন্দ্র করে আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের উত্তেজনার কারণে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।স্থানীয় ও দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ একরামুল করিম চৌধুরীর ‘হাতিয়া আগমন’ উপলক্ষে উপজেলা আওয়ামী লীগ জনসভার আয়োজন করে। জনসভায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মোহাম্মদ আলীর সমর্থকেরা প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টির চেষ্টা করেন বলে অভিযোগ ওঠে।তবে মোহাম্মদ আলী অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ক্ষমতাসীনদের সমর্থকগোষ্ঠীর অত্যাচার-নির্যাতনে অতিষ্ঠ জেলে ও নির্যাতিত মানুষ সাংসদের আগমনের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানাতে গাছ কেটে সড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দিয়েছে—এমনটা শুনেছেন তিনি।এ ব্যাপারে হাতিয়ার ভারপ্রাপ্ত উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ওয়ালিউর হাছান মুঠোফোনে প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, উপজেলা আওয়ামী লীগের জনসভা ঘিরে আইনশৃঙ্খলার অবনতির আশঙ্কায় ১৪৪ ধারা জারির সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।মাত্র ৪৪ বছর বয়সেই চলে গেলেন জাতীয় দলের সাবেক অফস্পিনার শেখ সালাউদ্দিন। আজ মঙ্গলবার ভোরে হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। ১৯৯৭ সালে আইসিসি ট্রফি বিজয়-পরবর্তী সময়ে দেশের হয়ে ছয়টি একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলেছিলেন। খুলনা বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেণীর ক্রিকেটও খেলেছেন বেশ কিছুদিন (২০০০-২০০৬)। টেস্টটা খেলা না হলেও দেশের ক্রিকেট অঙ্গনে বেশ নির্ভরযোগ্য খেলোয়াড় হিসেবেই পরিচিত ছিলেন তিনি।মৃত্যুর আগে সালাউদ্দিন বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) খুলনা বিভাগীয় কোচ হিসেবে কর্মরত ছিলেন। তাঁর মৃত্যুতে গভীর শোক প্রকাশ করেছে বিসিবি। আজ মিরপুর শেরেবাংলা স্টেডিয়ামে নিউজিল্যান্ড ও বাংলাদেশের ম্যাচের শুরুতে শেখ সালাউদ্দিনের মৃত্যুতে নীরবতা পালনের কর্মসূচি হাতে নেওয়া হয়েছে।১৯৯৭ সালের এশিয়া কাপে পাকিস্তানের বিপক্ষে একদিনের ক্রিকেটে শেখ সালাউদ্দিনের অভিষেক হয়। জীবনের প্রথম আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতাতেই তিনি বল হাতে নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রাখেন। এরপর আরও কয়েকটি ওয়ানডে খেললেও তিনি তাঁর অন্তর্জাতিক ক্যারিয়ার দীর্ঘায়িত করতে পারেননি।আগে প্রতিবছর ৬-৭ লাখ টাকার একটা অনুদান পেত ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগের ক্লাবগুলো। বিপিএলের ধাক্কায় টাকার অঙ্কটা এক লাফে চলে গেল ২৫-৩০ লাখে।প্রথম বিপিএলের বছরের মতো এবারও ক্লাবগুলোর অন্যায় আবদার মানতে বাধ্য হচ্ছে বিসিবি। কাল নতুন পরিচালনা পর্ষদের প্রথম বোর্ড সভায় সিদ্ধান্ত হয়েছে, আগেরবারের মতো এবারও সুপার লিগে ওঠা ছয় দলকে বিসিবি ৩৫ লাখ টাকা করে অনুদান দেবে। আর সুপার লিগে উঠতে না পারা বাকি ছয় দল পাবে ২৫ লাখ টাকা করে। এবার প্রিমিয়ার লিগ শুরুর আগেই টাকাপয়সা নিয়ে বোর্ডের সঙ্গে অনেক দিন দেনদরবার চলেছে ক্লাবগুলোর।বিসিবির কালকের সভায় জাতীয় দলের প্রয়াত ক্রিকেটার ও বিসিবির বিভাগীয় কোচ শেখ সালাউদ্দিনের পরিবারকে ৫ লাখ টাকা দেওয়ারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।বিস্ময়কর হলেও মানতে হবে, পৃথিবী থেকে আম আদমি লুপ্ত হয়নি। এই সেদিন ভারতের দিল্লি বিধানসভা নির্বাচনে আম আদমি পার্টির (এপিপি) অভাবিত সাফল্যের সুবাদে তাদের খোঁজ পাওয়া গেল। রাজনীতির গৎবাঁধা ছক উল্টে দিয়ে তারা তাদের শক্তিমত্তাকেই জানান দিল না, বড় কাজটি যা করল তা এক কথায় প্রকাশ করলে বলতে হয় প্রত্যাখ্যান। মতলববাজ, দুর্নীতিকবলিত, প্রচলিত রাজনীতিকে সরোষ প্রত্যাখ্যান।যে যেভাবেই দেখার চেষ্টা করুন, ঘটনাটা তথাকথিত নেতিবাচক ভোটের কারসাজি নয়। সাম্প্রতিক তৃতীয় বিশ্বে গণতন্ত্রচর্চা বলতে যা বোঝায় তা চার বা পাঁচ বছরের বিরতিতে নাগরিকদের অন্যতম মৌলিক অধিকার ভোট প্রয়োগের মধ্য দিয়ে শাসকবদল। সামগ্রিক বিচারে প্রত্যাশার চেয়ে এখানে ক্ষোভ-হতাশাই বেশি ক্রিয়াশীল। কিন্তু দিল্লিতে বিপুলসংখ্যক আম-আদমি এপিপির পক্ষে রায় দিয়ে যা করল তাতে অনেকেই প্রত্যাশা দেখতে পাচ্ছেন। হ্যাঁ, ক্ষোভ-হতাশা রয়েছে শাসককুলকে প্রত্যাখ্যানে, তবে ভুঁইফোড় এপিপির পক্ষাবলম্বনের মধ্য দিয়ে প্রত্যাখ্যানের শক্তিতে তারা আশার আলোর খোঁজই করেছে। সে আশা কতটা ফলবান হবে বা আদৌ হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে কি না, সে অন্য বিতর্ক।অরবিন্দ কেজরিওয়ালের এপিপিকে রাজনৈতিক দল বলার সময় এখনো আসেনি। আন্না হাজারের সঙ্গে মতভিন্নতার মধ্য দিয়ে রাজনৈতিক দল গড়া, নির্বাচনে অংশ নেওয়া, শীলা দীক্ষিতের মতো ডাকসাইটে মুখ্যমন্ত্রীকে হটানো, এমনকি সরকার গঠনের পরও এপিপিকে ভারতের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বড়জোর একট সরব সিভিল সোসাইটি আন্দোলনের মুখপাত্র আখ্যা দেওয়া যেতে পারে। তবে বড় যে কাজটি তারা করেছে তা বিলুপ্ত হতে বসা আমজনতাকে দিয়ে রাজনৈতিক নষ্টামিকে ঝাঁটাপেটা করা। অনেকটা আক্ষরিক অর্থেই, এপিপির নির্বাচনী প্রতীক ঝাঁটা।ভোট যদি রাজনীতিচর্চার মুখ্য নিয়ামক হয়, তাহলে সেই ভোটের মাধ্যমেই রাজনৈতিক বজ্জাতিকে ঝাঁটার ঘায়ে ঘায়েল করা সমসাময়িক কালের বড় ঘটনা। ব্যতিক্রমীও বটে। রাজনীতিবিদেরা জনগণ জনগণ করে যতই গলার শিরা ছিঁড়ে ফেলার কায়দা করুক, তারা নিশ্চিত ধরে নেয় যাদের দোহাই উঠতে-বসতে তারা পাড়ে তারা অদৃশ্য, পঞ্চভূতে বিলীন। কিন্তু প্রবল ধাক্কায় খোঁয়ারি ভেঙে ভারতীয় রাজনীতিবিদদের কথাবার্তায় বেফাঁস কিছু সত্য ঠিকই বেরিয়ে পড়েছে। কংগ্রেসের ভরাডুবির আগে মুখ্যমন্ত্রী শীলা দীক্ষিত সদম্ভে বলেছিলেন আম আদমি বলে কিছু তাঁর রাডারে ধরা পড়ছে না। আর ভরাডুবির পর কংগ্রেসের মন্ত্রী সচিন পাইলটের মতে, ঘটনাটা বড়ই আশ্চর্যজনক (অ্যাশটোনিশিং)। আশ্চর্য হওয়ার পেছনে তাঁর বক্তব্য, সাধারণ মানুষের পক্ষে একটা কঠিন পরিস্থিতিতে এক জায়গায় জড়ো হয়ে নিজেদের এভাবে প্রাসঙ্গিক ও অর্থময় করে তুলতে পারা ঘটনা হিসেবে সম্পূর্ণ নতুন, বিগত কয়েক যুগে যার নজির নেই। এটা পরিষ্কার, রাজনৈতিক লেজুড়বৃত্তিহীন সাধারণ মানুষ তথা আম আদমির অস্তিত্ব সচিন পাইলটদের হিসাবনিকাশে ছিল না।ব্যাপার যা দাঁড়াল, আম আদমি আছে, তার অপার শক্তি নিয়েই। আম আদমি কারা? তারা কি জোট-গোত্রহীন, সামাজিকভাবে পরিচিতিহীন, পশ্চাৎপদ, ছন্নছাড়া বেয়াকুব জনগোষ্ঠী? রাজনীতিতে আসক্তি নেই বলে কি তারা রাজনীতি-অসচেতন, নাকি রাজনীতিবিমুখও? বিমুখ হতে গেলে কিন্তু বেয়াকুবি চলে না, সচেতনতার দরকার হয়। শিল্পবিপ্লবের সময় সমাজের মানুষজনকে মোটামুটি তিন শ্রেণীতে ভাগ করার রেওয়াজ ছিল—কুলীন (নোবিলিটি), যাজক (ক্লার্জি) এবং সাধারণ মানুষ (কমোনার)। আজকের দিনে এই শ্রেণীভাগের প্রাসঙ্গিকতা সেভাবে না থাকলেও কৌতূহলের ব্যাপার হলো, সাধারণ মানুষ যারা অভব্য-অভদ্র না হলেও কুলীন বা এলিট মোটেও নয়, ধর্ম-কর্ম করলেও মোল্লা-পুরুত-পাদরি নয়, তাদের নিয়ে টানাহেঁচড়ার শেষ নেই। অন্য দুই সম্প্রদায়কে নিয়ে কালেভদ্রে কথা ওঠে, বিতর্ক হলে সেটা একাডেমিক পর্যায়েই থেকে যায়। মূলত তারা এলিট গোত্রবদ্ধ। উন্নত ও তৃতীয় বিশ্বের এলিটদের মধ্যে ফারাক ম্যালা, যদিও মনস্তত্ত্বের রসায়নে বিভেদ নেই। অন্যদিকে মাত্রার তারতম্য সত্ত্বেও সাধারণ মানুষের মতিগতি সব বিশ্বেই এক। এখানে বলা উচিত, তৃতীয় বিশ্বে খুদে এলিটদের দাপটে সাধারণেরা অচ্ছুত আম আদমিতে পর্যবসিত। সর্বসাধারণ তারা নয়, রাজনীতিবিদেরা জনগণ বলে তাদের বোঝাতে চাইলেও তারা সেই জনগণও নয়। সুতরাং মূল প্রশ্ন তারা কারা?দিল্লি নির্বাচনে তাদের যে পরিচয় উঠে এসেছে তাতে তারা ঘোরতর রাজনীতিসচেতন, তবে বিদ্যমান রাজনীতিতে আস্থাহীন। তারা তথাকথিত আদর্শিক দর্শনের তোয়াক্কা করে না। দরিদ্র-অবস্থাপন্ন, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, বেকার-পেশাজীবী মিলে তারা যে জায়গায় এককাট্টা, তা তাদের আত্মোপলব্ধিতে। লেজুড়বৃত্তিহীন বলে নিজ নিজ আত্মোপলব্ধিকে ইচ্ছামতো শাণাতে তারা সক্ষম, যা রাজনৈতিক দলের ধ্বজাধারীদের পক্ষে অসম্ভবই নয়, কল্পনাতীতও। এপিপি তাদের একত্র করেছে, যূথবদ্ধতার শক্তি জুগিয়েছে। যেহেতু তারা আম আদমি, কঠিন তত্ত্বকথায় আগ্রহ নেই, এপিপি তাদের সোজাসাপটা বলেছে—দুর্নীতি হটাও, রাজনীতি চোরে ভরে গেছে, চোরদের বিদায় করো।যে কারণে এত কথা এবার সে প্রসঙ্গে আসতে হচ্ছে। বাংলাদেশে আমরা আম-আদমির দেখা কবে পেয়েছি? আমরা সংগঠিত গণ-আন্দোলন দেখেছি, স্বৈরাচারবিরোধী গণ-অভ্যুত্থান দেখেছি আর গোটা জাতির পরাধীনতার গ্লানি ঘোচাতে মরণপণ মুক্তিযুদ্ধ ৪২ বছর আগে শুরু হয়ে আজও শেষ হয়নি। বেশ কটা জাতীয় নির্বাচনও দেখা সারা, অচিরে আবারও দেখতে যাচ্ছি। যত রূঢ়ই শোনাক, আমজনতাকে আলাদা করে খুঁজে বের করা মুশকিল। তারা ছিল, তবে জনারণ্যে আচ্ছন্ন। প্রগতিচিন্তার ইচ্ছাপূরণের খোরাক জোগাতে এ নিয়ে কেউ দ্বিমত পোষণ করলেও কিছু যায়-আসে না। আমাদের বুদ্ধিবৃত্তিক দেউলিয়াপনার অন্যতম ক্ষত হলো ইচ্ছাপূরণের কারসাজিতে প্রগতিশীল হতে চাওয়া।এখন যা প্রশ্ন, আমাদের মতো হতদরিদ্র, চিরবঞ্চিত মানুষের দেশে স্বতন্ত্র, স্বাধীন, অমুখাপেক্ষী আমজনতার অস্তিত্ব নেই কথাটা বলতে কি আমরা কুণ্ঠিত? গোটা রাষ্ট্রব্যবস্থা আর কত দুর্নীতিবাজ হলে, রাজনীতি কতটা বেলাজ-বেহায়াপনা উগরে দিলে ১৬ কোটি মানুষের অন্তত একটা উল্লেখযোগ্য অংশ রাজনৈতিক দলবাজিমুক্ত নিখাদ আমজনতায় পরিণত হওয়ার যোগ্যতা অর্জন করবে? তথ্য বলছে, এ দেশে আমাদের অবাধ দুর্নীতি ও অপশাসনের পালাবদলময় রাষ্ট্রব্যবস্থা পৃথিবীর উন্নত-অনুন্নত, ধনী-নির্ধন সব দেশকে টেক্কা দেওয়ার নজির রেখেছে। আমাদের তথাকথিত জনপ্রতিনিধিরা ক্ষমতায় আসীন হওয়ামাত্র আলাদিনের দৈত্যের ভেলকিবাজিতে অতি অনায়াসে নিজেদের বিত্ত-বৈভবের শনৈঃ শনৈঃ স্ফীতি ঘটান। নিজেদের ঘটান, তাঁদের পতিব্রতা স্ত্রীদের ঘটান, আত্মীয়-পরিজনও এ থেকে বাদ পড়েন না। আমাদের জ্যেষ্ঠতম মন্ত্রী জনসমক্ষে এর সরল-সোজা ব্যাখ্যা দিতে গিয়ে জানান, ক্ষমতায় বসলে সম্পদ বাড়াই স্বাভাবিক ঘটনা। খবরের কাগজের পাতায় এ নিয়ে ঠাট্টা-মশকরা চলছে। এ পর্যন্তই।এমন অকপট ব্যাখ্যা, যা আগে কারও মগজে গজায়নি, সম্পদশালী হওয়ার অত্যন্ত সুচারু ও নির্ঝঞ্ঝাট পথই বাতলে দেয় না, সম্পদ আহরণের একটা তত্ত্বও দেশবাসীর কাছে পেশ করে। ক্ষমতায় আরোহণ মানে তো কেবল মন্ত্রী-সাংসদ মিলে শ কয়েক মানুষের সম্পদ-আকাঙ্ক্ষাকেই চরিতার্থ করা না, রাষ্ট্রব্যবস্থার স্তরে স্তরে, নানা অন্ধি-সন্ধিতে পাহারারত বেশুমার সহগামী ও তাদের তাঁবেদারদেরও সম্পদশালী করা। হ্যাঁ, কাজটা সম্পদ আহরণ, চুরি নয়।চুরি যে করে সে সোজাসাপটা চোর। সিঁধ কেটে বা গা-গতরে চপচপে তেল মেখে ঘুমন্ত গৃহস্থের ঘরে রাতের আঁধারে হানা দেয় যারা, তাদের চোর বলা হয়। তাদের খুব সাবধানি হতে হয়, কারণ ধরা পড়ার ভয়। চোর বা তার মামাতো-খালাতো ভাই পকেটমাররা নিম্ন শ্রেণীর জীব। এদের সঙ্গে শিক্ষিত-অর্ধশিক্ষিত মধ্যবিত্তের কোনোরূপ জ্ঞাতিগত সম্পর্ক বা কিনশিপ নেই।অন্যদিকে ক্ষমতায় চড়ে চুরির অক্লান্ত সাধনায় যাদের অশেষ প্রতিষ্ঠা-প্রতিপত্তি, তাদের প্রতি আপামর মধ্যবিত্তের জ্ঞাতিগত ও সামাজিক পক্ষপাত এতই প্রবল, সুভাষণের আড়াল খুঁজে চুরিকে চুরি না বলে বলা হয় সম্পদ আহরণ। জ্যেষ্ঠতম মন্ত্রী নিজে সম্পদশালী না হয়েও তত্ত্বটি কেন ফলাও করে জাহির করলেন? দেশবাসী জানে তাঁর অবস্থান তাঁর রাজনৈতিক সহগামীদের থেকে যথেষ্ট তফাতে। সামাজিক মনস্তাত্ত্বিকেরা এর পেছনে যে কারণটি অবশ্যই খুঁজে পাবেন তা এই জ্ঞাতিত্ব। আমাদের প্রচলিত রাজনৈতিক সংস্কৃতির বাতাবরণে যার লালন প্রশ্নাতীত এবং আপাতদৃষ্টিতে যার বাড় অপ্রতিরোধ্য।এ সত্ত্বেও এ কথা বিশ্বাস করা কঠিন, একচেটিয়া রাজনৈতিক জ্ঞাতিত্বের মায়ায় দেশের কমবেশি ১৬ কোটি মানুষই মোহান্ধ, অবরুদ্ধ। মায়ার এ বলয় অনেক বড়, সন্দেহ নেই; তবে এর বাইরে যারা, যাদের বলতে পারি আম আদমি, তারা কোথায়? তারা নেই এ কথা হঠকারিতামূলক। এ দেশে মৃত্যু অবধি থাকব বলে যারা টিকে আছি, তাদের বিশ্বাস করতেই হবে তারা আছে, হয়তো জনারণ্যে আচ্ছন্ন হয়ে।তাদের তালাশ করতে হয়, এক জায়গায় জড়ো করতে হয়।কারা করবে তালাশ? ঘুরিয়ে বললে, কে বা কারা কিসের যোগ্যতায় তাদের কাছে পৌঁছাবে বা পৌঁছার সাহস করবে? প্রশ্নটা যত অবধারিতই হোক, রাজনৈতিক মৎস্যজীবীদের জাল থেকে বেরোতে গেলে এ প্রশ্ন করে করে জবাবের অপেক্ষায় থাকা ছাড়া উপায় নেই।ওয়াসি আহমেদ: কথাসাহিত্যিক।
টেনিসে সর্বকালের সেরাদের নিয়ে বিতর্ক হবে আর রাফায়েল নাদালের নাম আসবে না—এ কথা বিশ্বাস করেন না সর্বকালের অন্যতম সেরা পিট সাম্প্রাস। ১৪টি গ্র্যান্ড স্লাম জেতা এই মার্কিন টেনিস তারকা মনে করেন, ২৭ বছর বয়সী নাদালের সবাইকে ছাড়িয়ে যাওয়াটা কেবলই সময়ের ব্যাপার।কিছুদিন আগেই সাম্প্রাসের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আন্দ্রে আগাসি পুরুষ টেনিসে সর্বকালের সেরা হিসেবে উল্লেখ করেছিলেন রজার ফেদেরারের নাম। তবে সাম্প্রাস মনে করেন, ৩২ বছর বয়সী সুইস তারকা ফেদেরার এই মুহূর্তের সেরা হলেও অচিরেই নাদাল তাঁকে ছাড়িয়ে যাবেন। ১৭টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী ফেদেরারকে ছাড়িয়ে যাওয়ার সব ক্ষেত্রই প্রস্তুত করে ফেলেছেন ইতিমধ্যে ১৩-তে পৌঁছে যাওয়া নাদাল।নাদাল সম্পর্কে দারুণ ইতিবাচক সাম্প্রাস, ‘রাফা এরই মধ্যে অনেক কিছুই জিতেছে। তার সময়কার সব খেলোয়াড়ের বিপক্ষেই নাদাল নিজের শ্রেষ্ঠত্ব প্রমাণ করেছে। ২৭ বছর বয়সী এই স্প্যানিয়ার্ডের কাছ থেকে আরও অনেক কিছুই পাওয়ার বাকি। আমার মনে হয়, অচিরেই সে ফেদেরারকে ছাড়িয়ে যাবে।’নাদালের ক্যারিয়ার রেকর্ডে সাফল্যের হার ৮৪ শতাংশ। ইতিমধ্যে তিনি ৬০টি ব্যক্তিগত শিরোপা জয় করে ফেলেছেন। ২০০৮ সালের বেইজিং অলিম্পিকে সোনার পদকও গলায় ঝুলিয়েছেন। জয় করা ১৩টি গ্র্যান্ড স্লামের মধ্যে ফ্রেঞ্চ ওপেন আটটি, ইউএস ওপেন দুটি ও অস্ট্রেলিয়ান ওপেন একটি। টেনিসের সবচেয়ে মর্যাদাকর উইম্বলডনের শিরোপাও তিনি হাতের মুঠোয় এনেছেন একাধিকবার (দুবার)। গত মৌসুমে চোটজনিত কারণে দীর্ঘদিন কোর্টের বাইরে না থাকলে হয়তো সাম্প্রাসের আশাবাদ অনুযায়ী এগিয়ে যেতে পারতেন আরও অনেকটা পথ। তবে চোট কাটিয়ে কোর্টে নেমেই স্বমূর্তিতে ফেরার ইঙ্গিত দিয়ে দিয়েছেন তিনি। এখন অপেক্ষা কেবল সাম্প্রাসের ভবিষ্যদ্বাণী সত্যি হওয়ার। সর্বকালের সেরা হওয়ার দৌড়ে নাদালের চেয়ে এগিয়ে যে নেই আর কেউই। সূত্র: রয়টার্স।‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে যায়েঙ্গে’খ্যাত বলিউডের তারকা অভিনেত্রী কাজলের বাড়ি থেকে সম্প্রতি ১৭টি সোনার বালা চুরি করে নিয়ে গেছে চোর।মুম্বাইয়ের জুহুতে সপরিবারে বসবাস করেন বলিউডের তারকা দম্পতি কাজল ও অজয় দেবগন। সম্প্রতি তাঁদের বাসায় ঢুকে ১৭টি সোনার বালা চুরি করে পালিয়ে গেছে চোর। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে ইন্দো-এশিয়ান নিউজ।এই চুরির ঘটনায় পুলিশি অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি জানার পর কাজলের বাসা পরিদর্শন করেছে মুম্বাই পুলিশ। এ প্রসঙ্গে একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানিয়েছেন, ‘এখন পর্যন্ত এ ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। তদন্তকাজ অব্যাহত আছে।’এর আগে চলতি মাসের ১৬ তারিখে বলিউডের আরেক অভিনেত্রী শিল্পা শেঠির বাসায় চুরির ঘটনা ঘটে। শিল্পা ও তাঁর স্বামী ব্যবসায়ী রাজ কুন্দ্রাও থাকেন জুহু এলাকায়। আইপড, আইপ্যাড, ট্যাবলেট, মিউজিক সিস্টেম মিলিয়ে এক লাখ ১০ হাজার রুপির মালামাল খোয়া যায় তাঁদের বাড়ি থেকে। এ ঘটনায় জুহু থানায় পুলিশি অভিযোগ দায়ের করা হলেও এখন পর্যন্ত কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি মুম্বাই পুলিশ।অনুশীলন হয়েছে সকালে। বিকেলে মোহামেডান ক্লাবে গিয়ে খেলোয়াড়দের নিজ নিজ কক্ষেই পাওয়া গেল। ফেডারেশন কাপের গ্রুপ পর্বে রহতমগঞ্জের সঙ্গে একমাত্র জয় নিয়ে শেষ আটে উঠেছে সাদা-কালোরা। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী আবাহনীকে হারিয়ে নকআউট পর্বে এড়াতে চেয়েছিল কঠিন প্রতিপক্ষ শেখ জামালকে। উল্টো আবাহনীর কাছে হেরেছে ০-২ গোলে। আজ থেকে শুরু কোয়ার্টার ফাইনালের প্রথম ম্যাচেই শেখ জামালের মুখোমুখি মোহামেডান।হারলেই বিদায়। মোহামেডানের অধিনায়ক জাহিদ হাসান এমিলি তাই জয় ছাড়া কিছুই ভাবতে পারছেন না, ‘শেখ জামাল খুবই ব্যালান্সড দল। তাই মাঠে আমাদেরও ভালো পারফর্ম করতে হবে। গত দুই ম্যাচে ভালো খেলেছি। কিন্তু আবাহনীর সঙ্গে বাজে দুটি গোল খেয়েছি। জিততে হলে শতভাগ উজাড় করে খেলতে হবে।’ শেখ জামালের সবচেয়ে বড় অস্ত্র সনি নর্দে। হাইতিয়ান এই মিডফিল্ডারকে নিয়েও ভাবছেন এমিলি, ‘সনি নর্দে সবার চেয়ে আলাদা। ওকে নিয়েই সবার যত চিন্তা। যেকোনো ম্যাচে সে একাই মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে। আমাদের তাকে নিয়ে বিশেষ কিছু পরিকল্পনা আছে।’ গ্রুপ পর্বে দুই ম্যাচে ৪ গোল খেয়েছে মোহামেডান। আরিফ, বাইবেক, তপু বর্মণ ও নাহিদের মতো ডিফেন্ডার থাকতেও রক্ষণ নিয়ে উদ্বিগ্ন মোহামেডান। সেটা স্বীকার করলেন মোহামেডান অধিনায়ক, ‘আসলে আমরা ৪ গোল খাওয়ার মতো দল না। আমাদের ডিফেন্সে অনেক সমস্যা ছিল। এটা নিয়েও কাজ করেছি। এই ম্যাচে আমরা সতর্ক হয়েই খেলব।’উত্তর বারিধারার সঙ্গে ২-০ গোলের জয়, ফেনী সকারের সঙ্গে জয় ১-০ গোলে। ফেডারেশন কাপের গ্রুপ পর্বে ঠিক নয় কোটি টাকার দল মনে হয়নি শেখ জামালকে।আজই বড় পরীক্ষা দিতে হবে গতবারের রানার্সআপদের। আর মোহামেডানকে মোটেই হালকা করেও দেখছেন না শেখ জামাল অধিনায়ক মামুনুল ইসলাম, ‘মোহামেডানকে খাটো করে দেখার সুযোগ নেই। আমাদের হয়ে নর্দে একাই যা খেলছে, এই ম্যাচে বাকিদেরও ভালো খেলতে হবে।’কোয়ার্টার ফাইনালে মুখোমুখি২৮ নভেম্বর মোহামেডান-শেখ জামাল বিকেল ৫টা২৯ নভেম্বর আবাহনী-ফেনী সকার বিকেল ৫টা৩০ নভেম্বর মুক্তিযোদ্ধা-ব্রাদার্স বিকেল ৫টা০১ ডিসেম্বর শেখ রাসেল-বিজেএমসি বিকেল ৫টা* সব ম্যাচ বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়ামে, সরাসরি সম্প্রচার বিটিভিতে।কানাডা, যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য ও ভারতের সেরা দলগুলোকে হারিয়ে ইতালির মিলান থেকে দেশের জন্য সেরা দলের সম্মান বয়ে এনেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের (আইবিএ) তিন শিক্ষার্থী—মাকামে মাহমুদ, আল জামি জাওয়াদ খান ও রাহসিন জামিল। তাঁরা তিনজনই আইবিএর বিবিএ ১৯তম ব্যাচের শিক্ষার্থী। তাঁদের কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁরা জিতে নিয়েছেন ২০১৩ সালে অনুষ্ঠিত দ্বিতীয় বার্ষিক ‘বিসিএফএন—ইয়ং আর্থ সলিউশন (ইয়েস)’-এর সেরা প্রকল্পের পুরস্কার। তাঁদের ‘ভ্যালু +’ পৃথিবীর পশ্চাৎপদ জনগোষ্ঠীর জন্য খাদ্যের সুরক্ষা ও সব মানুষের জন্য সুস্বাস্থ্যের নিশ্চয়তা প্রদান করার প্রকল্প। প্রয়াত মার্কিন প্রেসিডেন্ট জন এফ কেনেডি একদা বলেছিলেন, ‘ক্ষুধার বিরুদ্ধে যুদ্ধই হলো মানব জাতির জন্য প্রকৃত স্বাধীনতাযুদ্ধ।’ ক্ষুধার বিরুদ্ধে এই বৈশ্বিক লড়াইয়ে সেনাপতি নির্বাচিত হয়েছেন বাংলাদেশের তিন সাহসী সৈনিক। পৃথিবীজুড়ে ২০০ মিলিয়ন মানুষ, যারা শহর অঞ্চলের বস্তিগুলোতে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে বসবাস করে, তাদের জন্য পুষ্টিকর খাদ্য সরবরাহ ও খাদ্য অপচয় রোধে কার্যকর এক মডেল দাঁড় করিয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের (আইবিএ) তিন চৌকস তরুণ।এই বছর ‘বিসিএফএন ইয়েস’ প্রোগ্রামে ২০টি দেশ থেকে মোট ১৫০টি প্রকল্প জমা পড়ে। সর্বমোট তিন হাজার প্রতিযোগী এই প্রতিযোগিতা উপলক্ষে জড়ো হয় ইতালির মিলান শহরে। ২৬ নভেম্বর বকোনি বিশ্ববিদ্যালয়ে পঞ্চম আন্তর্জাতিক খাদ্য ও পুষ্টি সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত হয় এই প্রতিযোগিতা। মূল আয়োজক বিশ্বখ্যাত পাস্তা প্রস্তুতকারক বারিল্লা ফুড গ্রুপ। কোম্পানির কর্ণধার গুইদো বারিল্লার ইচ্ছায়ই ৩০ বছরের কম বয়সী শিক্ষার্থী ও গবেষকদের উদ্ভাবিত প্রকল্প প্রদর্শিত হয় এই প্রতিযোগিতার মঞ্চে। এ বছর সেরা প্রকল্পের সম্মান জিতে নেয় বাংলাদেশের দল আইবিএর ‘ভ্যালু +’। একই সঙ্গে তারা অর্জন করে সেরা দলের প্রাইজমানি হিসেবে এক হাজার ইউরো, যেটা প্রতিযোগীরা বিনিয়োগ করতে চান তাঁদের প্রকল্পে। দেশে ফেরার পর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে কথা হয় ‘ভ্যালু +’ দলের সদস্যদের সঙ্গে। দলনেতা মাকামে মাহমুদ বলেন, ‘আমাদের প্রকল্প ছিল শক্ত ভিত্তির ওপর দাঁড় করানো এবং আমাদের উপস্থাপনাও প্রাণবন্ত ছিল, কিন্তু তার পরেও এত বড় বড় দলের ভিড়ে আমরা ঠিক স্বস্তিতে ছিলাম না। তবে আমরা আত্মবিশ্বাসী ছিলাম। শেষ পর্যন্ত যখন বিজয়ী হিসেবে বাংলাদেশের নাম ঘোষণা করা হলো, তখন গর্বে আমাদের বুক ভরে গেল!’মাকামে তাঁদের প্রকল্পের মূল বিষয়গুলো বুঝিয়ে বলেন, ‘আমাদের উদ্দেশ্য তিনটি—পুষ্টিকর খাদ্য সম্পর্কে জনসচেতনতা নিশ্চিতকরণ, একে ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে নিয়ে আসা এবং সবার কাছে তা সহজলভ্য করে তোলা। আমরা সমাজের পিছিয়ে পড়া মানুষগুলোর জন্য একটি কমিউনিটি খাদ্য বিতান গড়ে তুলব, যেখান থেকে সুলভমূল্যে পুষ্টিকর খাদ্য বিক্রি করা হবে। এর বাইরে আমাদের থাকবে পুষ্টি আপা, যিনি দরিদ্র মানুষের কাছে স্বাস্থ্যবার্তা পৌঁছে দেবেন এবং প্রতি জনপদে পরিচ্ছন্ন কমিউনিটি রান্নাঘর গড়ে তুলতে উদ্বুদ্ধ করবেন। আমাদের খাদ্য বিতানের সাপ্লাই চেইন নিয়ন্ত্রিত হবে মোবাইল ফোনের খুদেবার্তার মাধ্যমে।’ এরপর কথা বলেন আল জামি জাওয়াদ খান। ইতালি ভ্রমণের সবচেয়ে স্মরণীয় মুহূর্তটির কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, ‘পুরো অনুষ্ঠানটি ইন্টারনেটে সরাসরি সমপ্রচার করা হয়। আমরা সবচেয়ে বেশি খুশি হয়েছিলাম তখন, যখন বারিল্লা গ্রুপের চেয়ারপারসন মি. গুইদো বারিল্লা আমাদের সঙ্গে দেখা করতে আসেন এবং আমাদের প্রকল্পে বিনিয়োগ করার আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রতিযোগিতায় জয়লাভ ও বিশ্বের সবচেয়ে বড় পাস্তা প্রস্তুতকারক কোম্পানির সঙ্গে কাজ করার আমন্ত্রণ পাওয়া, একই সঙ্গে ইউরোপের সেরা শহরগুলো ঘুরে বেড়ানো, সব মিলিয়ে আমাদের মিশন শতভাগ সফল।’ ‘প্রজেক্ট ভ্যালু+’কে বাস্তবে রূপদান করতে বদ্ধপরিকর দলের তিন সদস্যই। রাহসিন জামিল বলেন, ‘যদি আমরা দেশের সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক অবস্থান চিন্তা করি, তাহলে আমাদের কাজটি হবে অনেক বড় একটি চ্যালেঞ্জ। আমরা এই প্রকল্পকে ধাপে ধাপে বাস্তবায়ন করতে চাই। আমরা ইতিমধ্যে বারিল্লা গ্রুপকে আমাদের সার্ভে রিপোর্ট ও কর্মপরিকল্পনা জানিয়েছি। তাদের সহায়তায় আমরা সফল হওয়ার পথে এগিয়ে যেতে চাই।’ এই প্রকল্প বাস্তবে রূপায়িত হলে সেটা কেবল বাংলাদেশের জন্যই সুফল বয়ে আনবে না, বরং একই মডেলের ওপর ভিত্তি করে আফ্রিকা ও এশিয়ার অন্যান্য শহরেও ক্ষুধার বিরুদ্ধে আন্দোলন জোরদার হবে। বাংলাদেশ এখন নিজের উন্নতির জন্য পরিকল্পনা করে না, বাংলাদেশের মডেল পৃথিবীর উন্নয়নে ব্যবহূত হয়। আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আইবিএর এই তিন ঋদ্ধিমানের সাফল্যই প্রমাণ করে, এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ, এগিয়ে যাবে বাংলাদেশ।
বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ‘বেশরম’ ছবির প্রচার চালাচ্ছেন রণবীর কাপুর। সম্প্রতি বিদেশ সফর শেষে দেশের মাটিতে পা রেখেই উটকো ঝামেলায় জড়িয়ে বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখে পড়েছিলেন এ তারকা অভিনেতা। মুম্বাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে না জানিয়ে সুগন্ধি, পোশাক, জুতাসহ এক লাখ রুপির পণ্য বহন করায় ৭০ হাজার রুপি জরিমানা দিতে হয়েছে তাঁকে।সম্প্রতি এক লাখ রুপির পণ্য নিয়ে মুম্বাই বিমানবন্দর ত্যাগ করার সময় রণবীরকে আটকে দেন শুল্ক কর্মকর্তারা। তাঁকে এক লাখ রুপি শুল্ক পরিশোধের পাশাপাশি ৭০ হাজার রুপি জরিমানা দিতে বলা হয়।কিন্তু সে সময় রণবীরের কাছে ওই পরিমাণ রুপি ছিল না। এ জন্য রণবীরের পাশাপাশি তাঁর বাক্সপেটরা সব আটকে রাখা হয়। এক ঘণ্টা পর রণবীরকে ছেড়ে দেওয়া হলেও তাঁর লাগেজ রেখে দেয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ। পরে এক কর্মচারীর হাতে শুল্ক ও জরিমানার অর্থ পাঠিয়ে লাগেজ ছাড়িয়ে নেন রণবীর। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে ওয়ান ইন্ডিয়া।এদিকে আজ ২৮ সেপ্টেম্বর রণবীরের ৩১তম জন্মদিন। তাঁর জন্মদিন উদযাপন পরিকল্পনা সম্পর্কে বিস্তারিত জানা না গেলেও শোনা যাচ্ছে, বিশেষ দিনটিতে তাঁর পাশেই থাকছেন ক্যাটরিনা কাইফ। এর আগে গত ১৬ জুলাই ক্যাটরিনার ২৯তম জন্মদিনে বিশেষ অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলেন রণবীর। ক্যাটের সঙ্গে নৈশভোজের পাশাপাশি তাঁকে গয়না উপহার দিয়েছিলেন রণবীর। এবার রণবীরের জন্মদিনে তাঁকে কীভাবে খুশি করেন ক্যাটরিনা, সেটাই এখন দেখার বিষয়।আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেছেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে আলোচনার জন্য দাওয়াত অব্যাহত রয়েছে। বিরোধীদলীয় নেত্রী যেকোনো সময় এলেই আলোচনা শুরু হতে পারে।’আজ মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে হরতালবিরোধী অবস্থানকালে হানিফ এ কথা বলেন।‘সংলাপের উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে’—বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলামের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হানিফ বলেন, ‘সরকার বারবার আলোচনার উদ্যোগ নিয়েছে, কিন্তু এখন উদ্যোগ নিতে হবে আপনাদেরই।’এর আগে ২৭ অক্টোবর ফখরুল বলেন, সংলাপের উদ্যোগ সরকারকেই নিতে হবে। এ ক্ষেত্রে বিএনপির দাবি স্পষ্ট। নির্বাচনকালীন নির্দলীয়-নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের বিষয়ে আলোচনা হতে হবে।আলোচনা প্রসঙ্গে ফখরুল বলেছিলেন, ‘যে সময়ে ফোন করা হয়েছে, সে সময়টা ছিল অত্যন্ত স্বল্প। আমাদের পক্ষে সম্ভব ছিল না যাঁরা আমাদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট, তাঁদের সঙ্গে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়ার। এটাকে অজুহাত হিসেবে দেখানোটা সঠিক হবে বলে আমি মনে করি না।’ফখরুলের বক্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে হানিফ বলেন, ‘গত দুই দিনের হরতালে যে মানুষের প্রাণহানি হয়েছে, তার দায় কে নেবে, বিরোধীদলীয় নেত্রী? আপনি কার স্বার্থে দেশকে আফগানিস্তান-পাকিস্তান বানাতে চান? নাশকতা সৃষ্টি করে কোন অপশক্তিকে ক্ষমতায় আনতে চাইছেন?’হরতালবিরোধী অবস্থানকালে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে হরতালবিরোধী অবস্থানকালে উপস্থিত রয়েছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরীসহ অন্য নেতারা।বিএনপির ডাকা তিন দিনের হরতালের আজ শেষ দিনে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মিছিল সমাবেশ করছে আওয়ামী লীগ ও এর সহযোগী সংগঠনগুলো। এ ছাড়া যুবলীগ হরতালবিরোধী মোটরসাইকেল মহড়া দিচ্ছে।শনিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মুঠোফোনে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে আলোচনার জন্য বিরোধীদলীয় নেতাকে ২৮ অক্টোবর গণভবনে আমন্ত্রণ জানান। জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, তাঁদের জোটের হরতাল কর্মসূচি থাকার কারণে ২৮ অক্টোবর নয়, ২৯ অক্টোবরের পর যেকোনো দিন তিনি সংলাপে বসতে প্রস্তুত।ষষ্ঠ রাউন্ড শেষে ১১ পয়েন্ট নিয়ে যৌথভাবে শীর্ষে সোনালী ব্যাংক, ফায়ার সার্ভিস ও সুলতানা কামাল স্মৃতি পাঠাগার। কাল সুলতানা কামাল স্মৃতি পাঠাগার নাইট চেসকে (৩.৫-০.৫ পয়েন্টে), ফরাশগঞ্জ বশির মেমোরিয়ালকে (৪-০), প্রতিভা দাবা গোষ্ঠী অগ্রণী ব্যাংককে (৩-১), মহাখালী প্রদীপ সংঘ ডেসটিনিকে (৩.৫-০.৫) হারিয়েছে। সোনালী ব্যাংক ড্র (২-২) করেছে ফায়ার সার্ভিসের সঙ্গে।রাজধানীর সঙ্গে আবার যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে দেশের প্রান্তবর্তী জেলাগুলোর। গত শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই নাটোর থেকে রাজধানীগামী দূরপাল্লার বাসগুলোর চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। ট্রেনও যাচ্ছে না ঢাকার দিকে। উত্তর ও দক্ষিণের প্রবেশপথ বনপাড়ায় বসানো হয়েছে পুলিশি পাহারা। এর সঙ্গে ঘন কুয়াশা সড়ক যোগাযোগ বিঘ্ন করে তুলেছে। গতকাল শনিবার কুয়াশার কারণে সাতটি সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে নাটোরে। প্রাণ হারিয়েছেন একজন।২৫ ডিসেম্বর থেকে অবরোধ উঠে গেলে আবার যোগাযোগব্যবস্থা চালু হয়। প্রায় গৃহবন্দী জনসাধারণ স্বস্তির শ্বাস ফেলেন। তবে বিরোধী দল ২৯ ডিসেম্বর সারা দেশ থেকে ঢাকা অভিমুখে যাত্রা কর্মসূচি দেওয়ায় যোগাযোগব্যবস্থা আবার ব্যাহত হয়ে পড়ে। রাজধানীর পথে যেন সরকারের ‘অঘোষিত অবরোধ’ শুরু হয় শুক্রবার থেকে।উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের প্রবেশদ্বার বনপাড়া-হাটিকুমরুল মহাসড়ক দিয়ে শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ঢাকার দিকে কোনো বাস যেতে দেখা যায়নি। বনপাড়া মোড়ে বসানো হয়েছে চেকপোস্ট। যাত্রীদের নামিয়ে তল্লাশি ও জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে।জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আমিনুল হক বলেন, ‘শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে আমাদের কোনো নেতা-কর্মী ঢাকায় যাওয়ার জন্য বাস-ট্রেন পাননি। মাইক্রোবাসে করে যাওয়ার চেষ্টা করা হলেও বনপাড়ায় চেকপোস্ট বসিয়ে সেগুলোকে আটকে দেওয়া হয়। এ ছাড়া শুক্রবার রাতে নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার নেতা-কর্মীরা “নীলসাগর” ট্রেনে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হন। পুলিশ ট্রেনটি টাঙ্গাইলে থামিয়ে দেয়। বগি তল্লাশি করে তাঁদের ১০ নেতা-কর্মীকে আটক করে।’এ বিষয়ে বনপাড়া হাইওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম মাসুদ পারভেজ বলেন, ‘এই সড়কে শুক্রবার সন্ধ্যার পর থেকে ঢাকার দিকে কোনো বাস যায়নি। আমার জানামতে ১৮ দলের কোনো নেতা-কর্মী এই সড়ক হয়ে ঢাকায় যাচ্ছিলেন না। নিরাপত্তার জন্য যানবাহনে তল্লাশি করা হচ্ছে। কাউকে হয়রানি করা হয়নি।’নাটোরের দূরপাল্লার বাস কাউন্টারগুলো থেকে শুক্রবার সকালের গাড়ির টিকিট দেওয়া হলেও সন্ধ্যা সাতটার পর আর কোনো টিকিট দেওয়া হয়নি। এ সম্পর্কে নাটোরের ন্যাশনাল পরিবহনের কাউন্টার ব্যবস্থাপক আলমগীর হোসেন বলেন, শুক্রবার সন্ধ্যা থেকে ঢাকাগামী কোনো বাসই নাটোরে আসেনি।ঢাকার পথে গাড়ি না ছাড়লেও দেশের অন্যান্য জেলায় যাতায়াতকারী আন্তজেলা বাসগুলো অবশ্য চলাচল করেছে। গতকাল লালপুর-ঈশ্বরদী, নাটোর-বগুড়া ও নাটের-ঢাকা সড়কে সাতটি দুর্ঘটনা ঘটেছে।গতকাল বেলা ১১টায় লালপুর-ঈশ্বরদী সড়কের লক্ষ্মীপুর এলাকায় জহুরা বেগম (৬০) নামের এক পথচারীকে একটি মাইক্রোবাস চাপা দিলে তিনি নিহত হন।
অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেছেন, যখন যে সরকার ক্ষমতায় যায়, তারা সারা জাতিকে লুণ্ঠন করে। লুণ্ঠনের সবচেয়ে বড় জায়গা হলো নদী। তিনি বলেন, কোনো সরকার নদী রক্ষায় সচেষ্ট নয়। সরকারের সবচেয়ে দুর্বৃত্ত ও দুষ্ট লোকদের হাতে নদী রক্ষার দায়িত্ব রয়েছে।আজ শনিবার ‘ঢাকার নদী ও জলাশয় রক্ষা’ বিষয়ে দিনব্যাপী এক সেমিনারের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় (বুয়েট) অডিটোরিয়ামে এ সেমিনারের আয়োজন করেছে অ্যাসোসিয়েশন অব বুয়েট অ্যালামনাই।বিশ্বসাহিত্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা আবদুল্লাহ আবু সায়ীদ বলেন, একসময় ঢাকা ছিল না, কিন্তু বুড়িগঙ্গা ছিল। বুড়িগঙ্গার প্রাণধারা আহরণ করেই গড়ে উঠেছে ঢাকা। বুড়িগঙ্গা যেমন ঢাকার জন্মদাতা, বাংলাদেশের আর সব নদীই হলো বাংলাদেশের জন্মদাতা। কিন্তু বুড়িগঙ্গার সঙ্গে সারা দেশের নদী দূষিত হতে হতে রুগণ হয়ে শুকিয়ে যাচ্ছে। তিনি রাজধানীর হাতিরঝিল প্রকল্পের উদাহরণ টেনে বলেন, “একটি ‘নিন্দিত’ সরকার (গত তত্ত্বাবধায়ক সরকার) হাতিরঝিল প্রকল্প শুরু করেছিল। আমরা বর্তমান প্রশংসিত সরকারের কাছ থেকে আরও বেশি মানবিক আচরণ আশা করি। তবে দুঃখের বিষয় হলো, সরকারগুলো শুধু প্রশংসা চায়, কিন্তু কাজ করতে চায় না।’উদ্বোধনী অধিবেশনে সভাপতিত্ব করেন বুয়েট অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি অধ্যাপক ড. জামিলুর রেজা চৌধুরী। তিনি বলেন, যে হারে নদীর দূষণ চলছে, এভাবে আরও দুই দশক চললে ঢাকা পুরোপুরি বসবাসের অযোগ্য হয়ে যাবে। কিন্তু দূষণ রোধে সরকারের সদিচ্ছা দেখা যাচ্ছে না। এ বিষয়ে প্রশাসনের পদক্ষেপ লোক দেখানো।উদ্বোধনী অধিবেশনে আরও বক্তব্য দেন বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল মতিন।দিনব্যাপী এ সেমিনারে আরও দুটি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হবে। বিকেলে সমাপনী অধিবেশনে সভাপতি হিসেবে পরিবেশ ও বনমন্ত্রী হাছান মাহমুদের উপস্থিত থাকার কথা।কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরে হরতালের দ্বিতীয় দিন গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগ-বিএনপির কর্মী-সমর্থকদের মধ্যে সংঘর্ষে আহত আওয়ামী লীগ নেতা শের আলী মিয়া মারা গেছেন। তিনি উপজেলার বলিয়ারদী ইউনিয়নের ৭ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন।শের আলী মিয়ার পরিবারের সদস্যরা জানান, গতকাল রাত ১১টার দিকে তিনি বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মারা যান। তিনি সেখানে চিকিত্সাধীন ছিলেন।শের আলী গতকাল আওয়ামী লীগের হরতালবিরোধী মিছিলে অংশ নিয়েছিলেন। মিছিলটি মধ্যবাজার এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় হরতালকারীদের সঙ্গে মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। ওই সময় তিনি ঢিলের আঘাতে সড়কে লুটিয়ে পড়েন। পরে বিএনপির কর্মীরা তাঁকে পেটান।উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মোবারক হোসেন বলেন, ‘শের আলী মিছিলের সামনের দিকে ছিলেন। আমাদের চোখের সামনেই তিনি মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। তখন আমরা তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাই।’পৌর বিএনপির সভাপতি এহসান কুফিয়ার ভাষ্য, বিএনপির নেতা-কর্মীদের হত্যা মামলার আসামি করতে স্বাভাবিক মৃত্যুকে হত্যা হিসেবে চালিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে।হাসপাতাল সূত্র জানায়, নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন থাকলেও হূদযন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।বাজিতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম রমজান হোসেন বলেন, নিহত শের আলীর পরিবারের পক্ষ থেকে বিএনপির কর্মীদের ছোড়া গুলি ও ঢিলের আঘাতে মৃত্যু হয়েছে বলে দাবি করা হচ্ছে। ময়নাতদন্তের জন্য মরদেহ কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।রাজনৈতিক অস্থিরতার ছোবল লেগেছে এয়ারটেল রাইজিং স্টার-এর ফুটবলার বাছাই কার্যক্রমেও। দেশের ৬৪টি জেলাকে প্রথমে ২৫টি কেন্দ্রে ভাগ করা হয়েছিল। রাজনৈতিক কারণে সময় পাওয়া যাবে না দেখে পরে কেন্দ্র কমিয়ে করা হয়েছে ১৯টি। তার পরও কার্যক্রম সাময়িক থমকে গেছে রাজনৈতিক অস্থিরতায়। ১৯টি কেন্দ্রের মধ্যে ১২টি কেন্দ্রে ফুটবলারদের চূড়ান্ত বাছাই হয়েছে—সিলেট, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, যশোর, চুয়াডাঙ্গা, মাদারীপুর, ফরিদপুর, বগুড়া, দিনাজপুর, ময়মনসিংহ ও মানিকগঞ্জ। ১২ কেন্দ্র থেকে নির্বাচিত করা হয়েছে ৭০ জনকে।শনিবার সকাল আটটা। টাঙ্গাইলের ঘাটাইল বাসস্ট্যান্ড। তখনো কুয়াশা কাটেনি। বাসের জন্য অনেকেই অপেক্ষা করছেন। কিন্তু বাস নেই। কাউন্টারও বন্ধ। গতকাল শনিবার ঢাকায় আসার জন্য বাসস্ট্যান্ডে এসে এমন চিত্রই দেখা গেল।আজ রোববার বিরোধী দলের ঢাকা অভিমুখে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচির জন্য দেশের বিভিন্ন স্থানের মতো টাঙ্গাইলেও ছিল অঘোষিত ‘সরকারি অবরোধ’। টিকিট বুকিং করা থাকলেও ভোরেই বাস কর্তৃপক্ষ জানিয়ে দেয়, তাদের বাসটি যাবে না। এই প্রতিবেদকের মতো অন্য যাত্রীদেরও প্রায় একই অবস্থা।কিছুক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার পর সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে ঘণ্টা খানেক পর টাঙ্গাইলের এলেঙ্গায় এসে দেখা গেল শত শত লোক দাঁড়িয়ে আছেন। কেউ বা ঢাকায় আসবেন, কেউ বা উত্তরাঞ্চলে যাবেন। উত্তরাঞ্চলে দু-একটি বাস গেলেও ঢাকা অভিমুখে কোনো বাস ছিল না।সকাল তখন সোয়া নয়টা। অনেকের মতো এলেঙ্গা থেকে পাঁচজন মিলে ভাড়া করা অটোরিকশায় কালিয়াকৈরের চন্দ্রায় পৌঁছে দেখা গেল, সেখানেও বাস নেই। পথে স্ট্যান্ডগুলোতে দেখা যায়, অসংখ্য লোক দাঁড়িয়ে আছেন, বাস নেই।তখন অটোরিকশার দুই সহযাত্রী বলছিলেন, তাঁরা এসেছেন সিরাজগঞ্জ থেকে। একজনের গন্তব্য সাভারের বিকেএসপি। জরুরি প্রয়োজন। তাই নিরুপায় হয়ে ভাড়া করা মোটরসাইকেলে করে সিরাজগঞ্জের কড্ডার মোড় থেকে আসেন এলেঙ্গা পর্যন্ত। তবে সামান্য পথেই তাঁদের একেকজনকে ১৫০ টাকা ভাড়া দিতে হয়। বাসের ভাড়া বড়জোর ৫০-৬০ টাকা। সিএনজির ভাড়াও বেশি।চন্দ্রা মোড়ে এসে বোঝা গেল, দুর্ভোগ এখানে আরও বেশি। শত শত নারী-পুরুষ ও শিশু দাঁড়িয়ে আছে গন্তব্যে আসার জন্য। ক্লান্ত অনেকে রাস্তার পাশেই বসে আছেন। বেশির ভাগই ঢাকায় আসার চেষ্টা করছেন। এখানে সিএনজিচালিত অটোরিকশার পরিবর্তে ব্যাটারিচালিত ইজিবাইক পাওয়া গেলেও ভাড়া অনেক বেশি। এর মধ্যে দু-একটি লোকাল বাস আসা মাত্রই হুমড়ি খেয়ে পড়ছেন লোকজন। এসব বাস বড়জোর বাইপাইল মোড় পর্যন্ত আসছে। ফলে ইজিবাইক ও ভ্যানই ভরসা।একটি লোকাল বাসে চেপে ইপিজেডের কাছে আসার আগেই দেখা গেল, লাঠিসোঁটা হাতে কয়েক শ লোক রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঢাকামুখী যানবাহনে বাধা দিচ্ছেন। জানা গেল, তাঁরা সরকারি দলের নেতা-কর্মী। বিরোধী দলের ডাকা কর্মসূচিতে আসা মানুষ মনে করে সবাইকেই বিভিন্ন যানবাহন থেকে নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে।কোনোমতে সরকারি দলের বাধা পেরিয়ে যাত্রীরা আবার অটোরিকশা, রিকশা, ভ্যানগাড়ি কিংবা অন্যান্য স্থানীয় যানবাহনে ঢাকা অভিমুখে রওনা হচ্ছেন। নবীনগরে এবার পুলিশের বাধা পাওয়া গেল। দেখা গেল, শত শত মানুষ দাঁড়িয়ে। সেখানে দাঁড়িয়ে ছিলেন ৩০-৩৫ বছরের এক যুবক। জানতে চাইলে বললেন, নওগাঁ থেকে তিনি এসেছেন। কীভাবে এলেন প্রশ্নে চোখেমুখে চরম বিরক্তি নিয়ে তিনি বললেন, সে গল্প অনেক লম্বা।দুপুর ১২টায় নবীনগর থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশায় করে সাভার বাসস্ট্যান্ডে থামতে হলো। রিকশার সহযাত্রী জানালেন, তিনি প্রাণ-আরএফলে চাকরি করেন। যশোর থেকে এসেছেন। শুক্রবার রাত নয়টায় রওনা হয়ে ফেরিঘাটে এসে জানতে পারেন, ফেরি বন্ধ। পরে ইঞ্জিনচালিত নৌকায় করে নদী পার হয়ে কোনোমতে নবীনগর পর্যন্ত আসতেই প্রায় ১৫ ঘণ্টা পেরিয়ে গেছে।সাভার বাসস্ট্যান্ডের ফুটওভারব্রিজের কাছে আসতেই দেখা যায়, এখানেও লাঠিসোঁটা হাতে কয়েক শ লোক যানবাহন আটকে যাত্রীদের নামতে বাধ্য করছেন। তাঁরাও সরকারি দলের নেতা-কর্মী। কিছুদূর হেঁটে আরেকটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় আমিনবাজারের পথে রওনা হলে হেমায়েতপুরে দেখা গেল যানবাহন আটকে দিচ্ছে পুলিশ। যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হচ্ছে। সঙ্গে তল্লাশি।আমিনবাজার পর্যন্ত আসার পর আবারও পুলিশি বাধা। সেখান থেকে লোকজন ব্যাগ নিয়ে হেঁটেই ঢাকায় আসছেন। গাবতলীতেও তাঁদের পুলিশের তল্লাশির মুখে পড়তে হয়। তখন বেলা দুইটা পেরিয়ে গেছে।
সোনালি রঙের আইফোন৫এস-এর জনপ্রিয়তার সুবাদে এবারে সোনালি রঙের আইপ্যাড মিনি বাজারে আনতে যাচ্ছে অ্যাপল। আইপ্যাড মিনির সোনালি রঙের সংস্করণটির তথ্য অনলাইনে ফাঁস হয়েছে। এক খবরে জানিয়েছে এনডিটিভি।সোনালি রঙের আইপ্যাড মিনির তথ্য ফাঁস হওয়ার আগে ধূসর রঙের একটি আইপ্যাড মিনির তথ্য অনলাইনে ফাঁস হয়েছিল। চীনের মাইক্রো ব্লগিং সাইট ‘ওয়েবু’ থেকে আইপ্যাডের নতুন সংস্করণের তথ্য ফাঁস হয়েছে।প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞরা ধারণা করছেন, নতুন আইফোনের মতো আইপ্যাড মিনির নতুন সংস্করণে ফিংগার প্রিন্ট সেন্সর যুক্ত করবে অ্যাপল। এর আগে আইফোনের তথ্য ফাঁসকারী সনি ডিকসন নামের এক ব্যক্তির মতে, ধূসর, সোনালি ও সিলভার রঙের আইপ্যাড মিনির দ্বিতীয় সংস্করণ বাজারে আসতে পারে।চলতি বছরের অক্টোবর মাসে নতুন আইপ্যাড মিনি বাজারে আনবে অ্যাপল। অ্যাপলের পক্ষ থেকে অবশ্য এ সংক্রান্ত আনুষ্ঠানিক কোনো ঘোষণা দেওয়া হয়নি।এদিকে বাজারে সোনালি রঙের স্মার্টফোনের চাহিদা দেখে স্যামসাং ও এইচটিসি সোনালি রঙের স্মার্টফোন বাজারে আনার ঘোষণা দিয়েছে। শিগগিরই সোনালি ও গোলাপি রঙের গ্যালাক্সি এস ৪ স্মার্টফোনের দুটি সংস্করণ বাজারে ছাড়বে এমন ঘোষণা দিয়েছে স্যামসাং। এদিকে এইচটিসি ঘোষণা দিয়েছে এইচটিসি ওয়ানের একটি সোনালি সংস্করণের।ছবি: সোনালি আইপ্যাড মিনি ২তিন দিনের হরতাল কর্মসূচি প্রত্যাহারে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে বারবার অনুনয় করেছেন। খালেদা জিয়া হরতাল প্রত্যাহার করে আলোচনায় সাড়া দেননি। দুই নেত্রীর ফোনালাপের যে টেপটি প্রকাশিত হয়েছে, তা থেকে জানা গেছে এই তথ্য।প্রধানমন্ত্রী বারবার হরতাল প্রত্যাহারের অনুরোধ করেন। তিনি বলেন, ‘আপনি কাল বক্তৃতায় কী বললেন, আর আজ কী বলছেন। আপনি রেকর্ড শুনে দেখেন। আপনি কাল আলটিমেটাম দিলেন। আমি সময়ের মধ্যে ফোন করলাম।’উত্তরে বিরোধীদলীয় নেতা বলেন, ‘রেকর্ড শুনলেও’ তাঁর পক্ষে হরতাল প্রত্যাহার করে আলোচনায় বসা সম্ভব নয়। ৩০ তারিখের আগে আলোচনা হবে না বলে তিনি জানান। বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনাকে বলেন, ‘নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচন দেন, আপনি “স্টেপ ডাউন” (পদত্যাগ) করুন, তাহলে হরতাল প্রত্যাহার হবে।’খালেদা জিয়া বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী পুলিশ প্রশাসন ও গোয়েন্দা সংস্থার লোকজনকে ১৮-দলীয় জোটের নেতাদের পেছনে লাগিয়ে রেখেছেন। তাঁরা ঘর থেকে বেরোতে পারেন না। তাঁদের একত্রিত করে হরতাল প্রত্যাহারের ব্যবস্থা করা সম্ভব না। এ ছাড়া তিনি আলোচনা ও আন্দোলন একসঙ্গে চলবে বলে বক্তৃতায় জানিয়েছেন। ফলে হরতাল প্রত্যাহার করা সম্ভব হবে না।’টেলিসংলাপে প্রধানমন্ত্রী কথা বলার সুযোগ পেয়েছেন খুব কম। বিরোধীদলীয় নেতা অনেকটা একতরফা কথা বলে গেছেন। খালেদা জিয়াকে একপর্যায়ে তিনি বলেন, ‘আপনি তো আমার কথাই শুনছেন না।’হরতাল প্রসঙ্গে খালেদা জিয়া প্রধানমন্ত্রীকে স্মরণ করিয়ে দেন, আওয়ামী লীগ বিরোধী দলে থাকার সময় ১৭৩ দিন হরতাল দিয়েছে। উত্তরে প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়াকে জানান, ১৯৯৬-২০০১ মেয়াদে বিএনপি হরতাল দিয়েছিল  ৩৭৩ দিন।হরতালে সহিংসতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জ্বালাও-পোড়াও করার অভিযোগ তোলেন বিরোধী দলের বিরুদ্ধে। উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, শেখ হাসিনার নির্দেশে বাসে গানপাউডার দিয়ে মানুষ হত্যা করা হয়েছিল, বিশ্বজিেক হত্যা করা হয়েছে। শেখ হাসিনা যখন ২১ আগস্টে গ্রেনেড হামলার কথা তোলেন, তখন খালেদা জিয়া বলেন, তাঁর দল এ কাজ করেনি। হাসিনা আরও বলেন, বিশ্বজিেক যারা কুপিয়েছিল, তাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তারা ছাত্রলীগ থেকে বহিষ্কৃত ও তাদের পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে বিএনপি-জামায়াতের সম্পৃক্ততা আছে।খালেদা জিয়া এসব কথা শুনতেই চাননি, তিনি সব হত্যাকাণ্ডের দায় একাধারে আওয়ামী লীগের ওপর চাপিয়ে যেতে থাকেন। কথোপকথনের একপর্যায়ে শেখ হাসিনা কোরআন শরিফ পোড়ানোর অভিযোগ করেন। তিনি প্রতিদিন নামাজ আদায় ও কোরআন শরিফ তেলাওয়াত করার কথা বলেন। উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, কোরআন শরিফ তাঁরাই (আওয়ামী লীগ) পোড়ান। কারণ তাঁরা কোরআন শরিফ বিশ্বাস করেন না।কথোপকথনে শেখ হাসিনা ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়াকে ‘মিথ্যে জন্মদিন’ পালন না করার অনুরোধ জানান। উত্তরে খালেদা জিয়া বলেন, ‘১৫ আগস্ট কি কেউ জন্ম নিতে পারবেন না।’ বিস্তারিত আসছে...মাসিমো মোরাত্তির কাছ থেকে ক্লাবের ৭০ শতাংশ অংশীদারি কিনে নিয়েছেন ইন্দোনেশিয়ান ব্যবসায়ী তহির। নতুন মালিক পেয়ে খুশিই হয়েছিল ক্লাবের সমর্থকেরা। একেবারে নিজস্ব একটা স্টেডিয়াম আর তারকা ফুটবলারে ভরা নতুন ইন্টার মিলানের স্বপ্ন দেখছিল সবাই। কিন্তু গতকাল লা গাজেত্তা দেল্লো স্পোর্ত-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে সমর্থকদের কিছুটা হতাশই করেছেন নতুন মালিক, ‘আমাদের উদ্দেশ্য ক্লাবের আর্থিক পুনর্গঠন, এমন একটা ক্লাব তৈরি করা যেটা হবে আর্থিকভাবে সবল। আমরা খেলোয়াড় কিনব, কিন্তু খুবই সতর্কভাবে।’ শিগগিরই তাই সান সিরো ছেড়ে নিজস্ব স্টেডিয়ামে যাওয়ার সম্ভাবনা নেই বলেও জানিয়ে দিলেন তহির, ‘একদিন আমাদের নিজস্ব স্টেডিয়াম হবে। তবে ঠিক এই মুহূর্তে আমরা স্টেডিয়াম বানাব বলে মনে হয় না।’ এএফপি।হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে গতকাল শনিবার প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব বৈঠক করেছেন। হেফাজতের কেন্দ্রীয় কার্যালয় চট্টগ্রামের হাটহাজারীর দারুল উলুম মঈনুল ইসলাম মাদ্রাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।হেফাজত সূত্র জানায়, গতকাল বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীন হাটহাজারী মাদ্রাসায় আসেন। তিনি শাহ শফীর সঙ্গে প্রায় দুই ঘণ্টা বৈঠক করেন। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন হেফাজতের মহাসচিব জুনায়েদ বাবুনগরী, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক আনাছ মাদানী, প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদ, হেফাজতের আমিরের একান্ত সচিব মাওলানা শফী।বৈঠকের কথা স্বীকার করে হেফাজতের যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মঈনউদ্দীন রুহী প্রথম আলোকে বলেন, বিরোধী দলের ঢাকা অভিমুখে যাত্রায় হেফাজতের সঙ্গে সম্পৃক্ত ধর্মভিত্তিক দলগুলো যাতে অংশগ্রহণ না করে, সে জন্য তাদের নিরুৎসাহিত করতে হেফাজতের আমিরকে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব। এ অনুরোধের জবারে শাহ আহমদ শফী বলেছেন, হেফাজতের সঙ্গে থাকা ইসলামি দলগুলো বিরোধী দলের কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা না-করা ওই সব দলের নিজস্ব ব্যাপার।
কথা ছিল জাকির হোসেন রাজুর ‘মনের মতো মানুষ পাইলাম না’ ছবির মাধ্যমে বিরতির পর অভিনয়ে ফিরবেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের একসময়ের ব্যস্ত নায়িকা অপু বিশ্বাস। কিন্তু শেষ পর্যন্ত ওয়াকিল আহমেদ পরিচালিত ‘শোধ’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে ফিরলেন অপু। এরই মধ্যে পুবাইলে ছবিটির শুটিংয়ে অংশ নিয়েছেন অপু। ছবিতে অপু অভিনয় করছেন শাকিব খানের বিপরীতে।বিরতির কারণ হিসেবে অপু বলেছেন, ‘আমি খুব অল্প বয়সে ছবিতে অভিনয় শুরু করেছিলাম। ছবির কাজের ব্যস্ততার কারণেই আত্মীয়স্বজন, বন্ধুদের কাছ থেকে অনেক দূরে সরে গিয়েছিলাম। হঠাত্ মনে হলো, তাদেরও তো সময় দেওয়া দরকার। আর তা ছাড়া, আমি নিজে অনেকটা মুটিয়েও গিয়েছিলাম। ওজন কমিয়ে আগের অবস্থায় ফিরে আসা আর পরিবার-পরিজনকে সময় দেওয়ার জন্যই এ বিরতি নিয়েছিলাম।’বিরতির পর ছবিতে কাজ করা প্রসঙ্গে অপু বলেন, ‘এখন আর আগের মতো একসঙ্গে অনেকগুলো ছবির কাজ করব না। যে ছবিটি করব, সেটা খুব ভালোভাবে করার চেষ্টা করব। নিজের পছন্দ ও দর্শকদের ভালো লাগার কথা মাথায় রেখেই ছবি হাতে নেব।’প্রসঙ্গত, অপু বিশ্বাস অভিনীত সর্বশেষ মুক্তি পাওয়া ছবিটি হলো ‘মাই নেম ইজ খান’। বদিউল আলম খোকন পরিচালিত ছবিটি গত রোজার ঈদে মুক্তি পায়। ছবিটি ব্যবসায়িক সফলতাও পেয়েছে। আর বিরতির আগে অপু বিশ্বাসের শুটিং করা ছবির নাম হলো ‘মনের ঠিকানা’। এর পরিচালক নজরুল ইসলাম। এখনো এ ছবির গানের শুটিং বাকি।চলমান রাজনৈতিক সংকট নিরসন ও সব দলের অংশগ্রহণে একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের পথ বের করতে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি) এবং বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) নেতারা আজ মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগের সভানেত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠক করবেন। আগামীকাল বুধবার তাঁরা বৈঠক করবেন বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সঙ্গে।সিপিবির কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল সোমবার এসব কথা জানানো হয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আজ সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় গণভবনে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনাসহ আওয়ামী লীগের নেতাদের সঙ্গে সিপিবি-বাসদের নেতারা বৈঠক করবেন। কাল বুধবার বিএনপির চেয়ারপারসন ও সংসদে বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াসহ বিএনপির নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন তাঁরা।চলমান সংকট নিরসনে সিপিবি-বাসদের নেতারা ইতিমধ্যে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলোচনা শুরু করেছেন। এর অংশ হিসেবে তাঁরা গণফোরাম ও গণতান্ত্রিক বাম মোর্চার সঙ্গে বৈঠক করেছেন।রাজনৈতিক সংকট নিরসন ছাড়াও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার ত্বরান্বিত করে রায় কার্যকর করা; জামায়াত-শিবির নিষিদ্ধ করা; রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্র বাতিল করা; পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা করার ডাক দিয়ে সিপিবি-বাসদ আগামী ৩ থেকে ৭ নভেম্বর সারা দেশে গণ-অভিযান কর্মসূচি পালন করবে।বিশ্বকাপ থেকে ফিরেই আবার গলফ কোর্সে নেমে পড়ছেন সিদ্দিকুর রহমান। আজ শুরু হওয়া ইন্দোনেশিয়ান ওপেনে অবশ্য অন্যতম ফেবারিট হিসেবেই শুরু করছেন বাংলাদেশের সেরা গলফার। এশিয়ান ট্যুরের সাড়ে সাত লাখ ডলার প্রাইজমানির এই টুর্নামেন্টে অংশ নিচ্ছেন মেজরজয়ী দক্ষিণ আফ্রিকান রেটিফ গুজেন, এ বছর এশিয়ান ট্যুর তিনটি শিরোপাজয়ী স্কট হেন্ডের মতো নামী গলফাররা।অবরোধ চলাকালে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে দুর্বৃত্তদের ছোড়া পেট্রলবোমায় দগ্ধ হয়ে নিহত শাজাহানের পরিবার এখন শোকে স্তব্ধ। গৌরীপুর উপজেলায় গত ২১ ডিসেম্বর বোমায় দগ্ধ শাজাহান গত শুক্রবার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটে শুক্রবার দুপুরে মারা যান।শাজাহান জেলা শহরে একটি রেস্তোরাঁর কর্মচারী ছিলেন। ২১ ডিসেম্বর তিনি ময়মনসিংহের আন্তজেলা বাস টার্মিনাল থেকে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় গ্রামের বাড়ি যাচ্ছিলেন। পথে গৌরীপুর-রামপুর সড়কের বীর আহমদপুর নামক স্থানে বোমা হামলায় দগ্ধ হন তিনি।গতকাল শনিবার সকালে শাজাহানের গ্রামের বাড়ি গিয়ে দেখা যায়, ছেলের লাশের পাশে বসে কাঁদছেন মা বুলবুল বেগম ও ছোট বোন আছমা। শাজাহানের ছেলে হায়দার (৬) ও মেয়ে শারমিন (৩) বাবার কফিনের পাশে নির্বাক দাঁড়িয়ে। তারা বুঝতে পারছে না, বাবা আর ফিরবে না। স্বামীর মৃত্যুতে বাকরুদ্ধ হয়ে গেছেন স্ত্রী রোখসানা আক্তার। তবে মাঝেমধ্যে ডুকরে কেঁদে উঠে বলছেন, ‘আমার স্বামীরে ফিরাইয়্যা দেও।’মা বুলবুল বেগম ছেলেকে হাসপাতালে ভর্তির পর থেকে মৃত্যুর আগ মুহূর্ত পর্যন্ত তাঁর পাশেই ছিলেন। শোকে তিনি স্তব্ধ হয়ে গেছেন। তিনি কোনো কথাই বলতে পারেননি।কান্নাজড়িত কণ্ঠে শাজাহানের শয্যাশায়ী বাবা মফিজ উদ্দিন জানান, চার বছর আগে তাঁর ছোট ছেলে সঞ্জু মিয়া ক্যানসারে মারা যায়। শেষ অবলম্বন ছিল বড় ছেলে। এবার সে-ও মারা গেল। এভাবে ছেলের মৃত্যু তিনি কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছেন না। ছেলেকে জীবিত অবস্থায় শেষবারের মতো দেখতে না পারার কষ্টের কথা জানিয়েও আক্ষেপ করছিলেন তিনি। শাজাহানের করুণ মৃত্যুতে পরিবারের সদস্যদের মতোই শোকে-ক্ষোভে স্তব্ধ গ্রামবাসীও।মাওহা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান নূর মোহামঞ্চদ বলেন, শাজাহান ছিল গ্রামের নিরীহ ছেলে। বোমা হামলায় তাঁর মৃত্যু মানতে পারছে না গ্রামের মানুষ।
ন্যূনতম মজুরি বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুর সদর উপজেলার ইটাহাটা এলাকায় আজ শনিবার সকালে কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা কর্মবিরতি পালন, বিক্ষোভ ও মহাসড়ক অবরোধ করেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে শ্রমিকদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। শ্রমিক অসন্তোষের কারণে তিনটি পোশাক কারখানায় আজ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।জয়দেবপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম কামরুজ্জামান প্রথম আলো ডটকমকে জানান, ইটাহাটা এলাকার এসকিউ সেলসিয়াস লিমিটেড ইউনিট-২-এর শ্রমিকেরা আজ সকাল নয়টা থেকে বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে তাঁরা কাজ বন্ধ করে ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে অবস্থান নেন। এ সময় এসকিউ সেলসিয়াস লিমিটেড কারখানার শ্রমিকেরা মহাসড়কের পাশের কোস্ট টু কোস্ট গ্রুপের একটি কারখানায় ইটপাটকেল ছুড়তে থাকেন। তাঁরা ওই কারখানার শ্রমিকদের বেরিয়ে এসে আন্দোলনে যোগ দিতে আহ্বান জানান। একপর্যায়ে কোস্ট টু কোস্ট গ্রুপের কারখানার শ্রমিকেরাও মহাসড়কে নেমে আসেন। সকাল সাড়ে নয়টা থেকে ১০টা পর্যন্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক অবরোধ করেন শ্রমিকেরা।খবর পেয়ে জয়দেবপুর থানার পুলিশ ও গাজীপুর শিল্প পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে শ্রমিকদের ধাওয়া দেয়। শ্রমিকেরা পুলিশকে লক্ষ করে ইটপাটকেল ছোড়েন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে পুলিশ। এতে শ্রমিকেরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। শ্রমিক অসন্তোষের পরিপ্রেক্ষিতে ইটাহাটা এলাকার তিনটি পোশাক কারখানায় আজ ছুটি ঘোষণা করা হয়েছে।গাজীপুরের জেলা প্রশাসক নুরুল ইসলাম জানান, আজ গাজীপুর এলাকায় ছয় প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন রয়েছে। তারা বিভিন্ন এলাকায় টহল দিচ্ছে।বিমানবন্দরে নেমে দুশ্চিন্তা ও দ্বিধায় পড়েন দিনাজপুরের বাসিন্দা মো. আবদুল মালেক। ঢাকা থেকে দিনাজপুর বেশ দূর। কীভাবে বাড়ি যাবেন, ভাবছিলেন তিনি। ‘এত দূরের যাত্রা নিরাপদ মনে করছি না। আবার না গিয়েও কোনো উপায় নেই। হরতালে ঢাকা থেকে দিনাজপুর বাস চলে না। ট্রেন চলছে কি না জানি না। সময়সূচিও জানা নেই।’ বললেন তিনি।পবিত্র হজ পালন শেষে দেশে ফিরে বিড়ম্বনায় পড়েছেন হাজিরা। কারণ, ১৮-দলীয় জোটের তিন দিনের হরতাল। শহরে তেমনভাবে কোনো পরিবহন নেই। দূরের যাত্রায় দুশ্চিন্তা আরও বেশি। কারণ বাস বন্ধ। ট্রেন চললেও হামলা-নাশকতার ভয়।আবদুল মালেকের মতো তিন শতাধিক হাজি গতকাল সোমবার দুপুরে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে জেদ্দা থেকে ঢাকায় অবতরণ করেন।নিরাপত্তাজনিত ভীতিতে অ্যাম্বুলেন্সে করে বিমানবন্দর ছাড়েন হাজিদের অনেকে। এ সুযোগে অবশ্য অ্যাম্বুলেন্সের মালিকেরা বেশ ভাড়া হাঁকাচ্ছেন।কুমিল্লার বুড়িচংয়ে যাবেন মাহবুব হোসেন। তিনি বলেন, এখান থেকে কুমিল্লা যেেত অ্যাম্বুলেন্সে ১৫ হাজার টাকা ভাড়া চাচ্ছে। অ্যাম্বুলেন্স হরতালের আওতামুক্ত থাকে, তাই ভাড়া এত বেশি। যদিও গতকাল চট্টগ্রামের সীতাকুণ্ডে অ্যাম্বুলেন্সও হামলার শিকার হয়েছে।দূরের যেসব জেলায় ট্রেন বা লঞ্চে যাওয়া যায়, সেসব জেলার হাজিরা কষ্ট হলেও হয়তো যেতে পারবেন। কিন্তু সড়কপথ ছাড়া যাতায়াতের অন্য কোনো উপায় নেই, এমন সব দূরবর্তী জেলার হাজিরা পড়েছেন সবচেয়ে বিপাকে। ঝিনাইদহের আইয়ুব আলী বলেন, ‘হরতালের কারণে বাস চলছে না। অন্য কোনো উপায়ে যাওয়া আমার পক্ষে সম্ভব নয়। শেষ পর্যন্ত কোনো হোটেলে উঠতে হবে। আশপাশে হোটেল কোথায় আছে, তাও জানি না।’ঢাকা ও এর আশপাশের বিভিন্ন জেলার হাজিরা বেশির ভাগই যাচ্ছেন ভাড়া করা কার বা মাইক্রোবাসে করে। পাশাপাশি ট্যাক্সিক্যাবেও যাচ্ছেন অনেকে। এসব গাড়ির সামনে পেছনে ‘হজযাত্রী’ লেখা কাগজ বা ব্যানার দেখা যায়। কোনো গাড়িতে লেখার পাশাপাশি লাগানো হয়েছে লাল কাপড়। তবে এতেও ভোগান্তির শেষ নেই। আছে অতিরিক্ত ভাড়ার বিড়ম্বনা। নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে যাবেন রহমতউল্লাহ। তিনি বলেন, ‘এখান থেকে রূপগঞ্জে যেতে গাড়ির ভাড়া চাইছে আট হাজার টাকা। তাও যেতে চাইছে দু-একজন চালক। কী করব বুঝতে পারছি না।’বিমানবন্দরের সামনে বেশ কিছু বাসে লেখা ‘হজযাত্রী’। বেশির ভাগই বিভিন্ন হজ এজেন্সির ভাড়া করা বাস।তবে ব্যক্তিপর্যায়ে কেউ কেউ তাঁদের স্বজনদের মাধ্যমে এ ধরনের বাস ভাড়া করেছেন। নরসিংদীর মো. নুরুল ইসলাম বলেন, ‘আগে থেকে বাস ভাড়া করে রেখেছি। হরতালে বাস কেউ ভাড়া দিতে চায় না। অনেক কষ্টে ৫২ আসনের এ বাস দ্বিগুণ মূল্যে ভাড়া করেছি মাত্র ১০ জন হাজির জন্য।’হাজিদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের আরেকটি ফ্লাইট বিকেল সোয়া পাঁচটায় ঢাকায় অবতরণ করার কথা।মাসিমিলিয়ানো অ্যালেগ্রি কিছুদিন আগে আফসোস করেছিলেন, ছেলেটার অনেক গুণ কিন্তু কাজে লাগাতে পারছে না। মিলান কোচের আক্ষেপ বোধ হয় এবার ঘুচিয়ে দেবেন মারিও বালোতেল্লি। শুধু মাঠে নয়, মাঠের বাইরেও। ইতালিয়ান এক টেলিভিশনে রান্নাবান্নার অনুষ্ঠানে হাজির হয়ে মিলান স্ট্রাইকার দেখালেন তাঁর গুণের খানিক ঝলক। বেশ কয়েকটি নিজস্ব রেসিপি বানিয়ে দেখালেন! রান্নাবান্না কোথায় শিখেছেন? এমন প্রশ্নে বালোতেল্লির সলজ্জ জবাব, ‘নিজে নিজেই। আমার মা খুব ভালো রান্না করে, তাই আমাকে কখনো এ নিয়ে ভাবতে হয়নি।’ কী বুঝলেন? যে ফুটবল খেলে সে রাঁধেও! ওয়েবসাইট।এক গ্রুপে সাবেক তিন বিশ্ব চ্যাম্পিয়ন। ইতালি, ইংল্যান্ড, উরুগুয়েকে নিয়ে আগামী বিশ্বকাপের ‘ডি’ গ্রুপটা পরিণত হয়েছে ‘ডেথ গ্রুপে’। কিন্তু মৃত্যুকূপে উরুগুয়ের সম্ভাবনা আসলে কতটা? দেশটির সর্বকালের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় এঞ্জো ফ্রান্সেসকোলি অবশ্য আশাবাদী তাঁর দেশ ভালোই করবে। দলে সুয়ারেজ আছেন না!ফ্রান্সেসকোলি গ্রুপের বাকি তিন দলকে যেন সতর্কবার্তাই দিয়ে রাখছেন, ‘বিশ্বকাপ সহজ নয়। কিন্তু উরুগুয়ে ভালো অবস্থায় আছে। এই দলের বিপক্ষে খেলাটা সহজ হবে না। যেখানে তারা খেলবে সেই জায়গাটাও সহজ হবে না। ব্রাজিলে শীতকাল হলেও তারা যেখানে খেলবে সেটা খুবই উত্তপ্ত ও আর্দ্র। কিন্তু উরুগুয়ে দেখিয়েছে তারা নিজেদের ছাড়িয়ে যেতে পারে।’গত ২০১০ বিশ্বকাপেই অবশ্য উরুগুয়ে সেটা দেখিয়েছে। সেবার উরুগুয়ে সেমিফাইনালে গিয়ে হেরেছিল। ’৮৬ ও ’৯০ বিশ্বকাপ খেলা ফ্রান্সেসকোলি আশাবাদী, ব্রাজিলেও তারা অনেক দূর যেতে পারবে। কারণ, ‘উরুগুয়ের লুইস (সুয়ারেজ) ও কাভানির মতো দুজন স্ট্রাইকার আছে। যদিও আমি মনে করি এই পজিশনে লুইসই সেরা।’ব্রাজিলে দারুণ একটা স্মৃতি আছে উরুগুয়ের। ব্রাজিলিয়ানদের শিরোপাস্বপ্ন ভেঙে দেওয়া পঞ্চাশের সেই মারাকানোজার ‘ভিলেন’ ছিল উরুগুয়েই। ফ্রান্সেসকোলি আরেকটি মারাকানাজোর স্বপ্ন দেখছেন, ‘কখনো কখনো মারাকানাজোর কথা ভাবতে ভালোই লাগে।’ তবে বাস্তবতাকে অস্বীকারও করতে পারছেন না, ‘ফুটবলে আপনি স্বপ্ন দেখতে পারেন, কিন্তু আপনাকে জানতে হবে ম্যাচ থেকে কীভাবে ফল বের করে আনতে হয়। আপনাকে সাতটা ম্যাচ নিখুঁত খেলতে হবে।’ রয়টার্স।
সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করা নিয়ে বাধ্যতামূলক ও প্রয়োগযোগ্য একটি প্রস্তাব গতকাল শুক্রবার রাতে সর্বসম্মতভাবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাস হয়েছে।বার্তা সংস্থা রয়টার্সে প্রকাশিত প্রতিবেদনে জানানো হয়, নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচ সদস্যরাষ্ট্রসহ বাকি ১০ সদস্যরাষ্ট্র প্রস্তাবটির পক্ষে ভোট দিয়েছে।জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই সিদ্ধান্তকে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ বলে অভিহিত করেছেন সংস্থাটির মহাসচিব বান কি মুন। কোনো ধরনের বিলম্ব ছাড়া বিশ্বস্ততার সঙ্গে প্রস্তাবটি বাস্তবায়ন করার জন্য সিরীয় সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন তিনি।কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, সিরিয়া যদি কথামতো তার রাসায়নিক অস্ত্র পরিত্যাগের প্রতিশ্রুতি না মেনে চলে, তবে দেশটির বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের কোনো কথা নেই ওই প্রস্তাবে। বরং তাতে বলা আছে, সিরিয়া যদি প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয় বা রাসায়নিক হামলা চালায়, তাহলে নিরাপত্তা পরিষদ জাতিসংঘ সনদের ৭ নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। বিশ্বশান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে ৭ নম্বর অনুচ্ছেদে সামরিক ও অসামরিক উভয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমতি আছে। তবে সিরিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া সব সময়ই তাদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের বিরোধিতা করে আসছে।দু-এক দিনের মধ্যেই আচরণবিধি চূড়ান্ত হবে বলে জানিয়েছেন নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ। তিনি জানান, আচরণবিধিতে আইনসংগত ও যুক্তিসংগতভাবে নির্বাচন-পূর্ব সময়কে সংজ্ঞায়িত করা হবে। শাহনেওয়াজ গতকাল সোমবার দুপুরে নির্বাচন কমিশন কার্যালয়ে গণমাধ্যমকর্মীদের এ কথা বলেন।জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাজনৈতিক দল ও প্রার্থীর আচরণ বিধিমালা, ২০০৮-এ নির্বাচনের ক্ষেত্রে সংসদের মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার বা সংসদ ভেঙে যাওয়ার পর থেকে পরবর্তী নির্বাচনের ফলাফল সরকারি গেজেটে প্রকাশের তারিখ পর্যন্ত সময়কে নির্বাচন-পূর্ব সময় হিসেবে উল্লেখ ছিল।মো. শাহনেওয়াজ বলেন, সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচনকালীন ৯০ দিনের দিন গণনা শুরু হয়ে গেছে। ৯০ দিনের মধ্যেই নির্বাচন করা হবে। সুবিধাজনক অবস্থায় তফসিল ঘোষণা করা হবে। নির্বাচনের প্রস্তুতি হিসেবে প্রশাসনে রদবদল প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, নির্বাচনের জন্য প্রয়োজন হলেই বদলি বা অন্যান্য রদবদল করা হবে। তিনি আরও বলেন, তফসিল ঘোষণা থেকে নির্বাচন পর্যন্ত ৪০/৪৫ দিন সময় লাগে। এ সময়ে সব ধরনের টাকা ছাড় করা বন্ধ করলে তা দেশে অচলাবস্থার সৃষ্টি করবে কি না, তাও বিবেচনা করা হবে।চাপটা তাহলে শুধু জোনাথন ট্রটেরই ছিল! অন্য ইংলিশ ক্রিকেটাররা রীতিমতো গায়ে হাওয়া লাগিয়ে ঘুরছেন। দুই টেস্টের মাঝের বিরতিতে স্টুয়ার্ট ব্রড, গ্রায়েম সোয়ান, ম্যাট প্রায়রসহ ছয় ইংলিশ ক্রিকেটার ঘুরতে গেলেন অস্ট্রেলিয়ার এক আদিবাসী গ্রামে। নর্দার্ন টেরিটরির আয়ারস রক, স্থানীয়রা যে জায়গাটাকে ডাকে ‘উলুরু’ নামে সেখানে ব্রড-সোয়ানরা বুমেরাং খেলেছেন, আদিবাসীদের সঙ্গে মিলে নাচ-গান করেছেন। সে ছবি আবার ব্রড ভাগাভাগি করেছেন ইনসটাগ্রামে তাঁর ভক্তদের সঙ্গে। দেখে কে বলবে ব্রিসবেনে এত বড় ব্যবধানে হেরেছেন এঁরা! এই ফুরফুরে মেজাজের ছোঁয়া একটু ট্রটকে দিলেই হতো। ওয়েবসাইট।আজ রোববার জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষার ফল প্রকাশ করা হবে। বেলা দুইটায় দেশের শিক্ষা বোর্ডগুলোর ওয়েবসাইট, সংশ্লিষ্ট সব পরীক্ষা কেন্দ্র ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং মুঠোফোনে খুদে বার্তার মাধ্যমে একযোগে ফল প্রকাশ করা হবে।ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান প্রথম আলোকে জানান, সকাল ১০টায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে ফলাফলের অনুলিপি তুলে দেওয়া হবে। এরপর বেলা একটায় শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে গণমাধ্যমের কাছে ফলাফল উপস্থাপন করা হবে।এবারও পাঁচটি সূচকের ভিত্তিতে শীর্ষ প্রতিষ্ঠান বাছাই করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে নিবন্ধিত প্রার্থীদের মধ্যে নিয়মিতদের পাসের হার, শতকরা পাসের হার, মোট পরীক্ষার্থীর মধ্যে জিপিএ-৫ প্রাপ্তির হার, পরীক্ষার্থীর সংখ্যা ও প্রতিষ্ঠানের গড় জিপিএ।ফল পুনর্নিরীক্ষণের জন্য ৩০ ডিসেম্বর থেকে আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত আবেদন করা যাবে। আবেদন পদ্ধতি টেলিটকের বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানা যাবে।৪ নভেম্বর জেএসডি ও জেডিসি পরীক্ষা শুরু হয়েছিল। এবার পরীক্ষার্থী ছিল প্রায় ১৯ লাখ।বিরোধী দলের ঢাকা অভিমুখে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচির দিনে পরীক্ষার ফল প্রকাশিত হওয়ায় বিদ্যালয়গুলোতে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি কম হওয়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। ফলে এবার আনন্দ-উচ্ছ্বাস আগের মতো না-ও হতে পারে।সমাপনীর ফল কাল: আগামীকাল সোমবার প্রকাশ করা হবে প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষার ফল।গত ২০ নভেম্বর শুরু হয়েছিল দেশের সবচেয়ে বড় পাবলিক পরীক্ষা প্রাথমিক ও ইবতেদায়ি শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষা। এতে পরীক্ষার্থী ছিল ২৯ লাখের বেশি।
যশোরের চৌগাছা উপজেলার সিংহঝুলী ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমান (৪৫) হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার উপজেলার হাটের দিনে স্বতঃস্ফূর্ত হরতাল পালিত হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের একাংশের উদ্যোগে খুনিদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবিতে দুপুরে চৌগাছা বাজারে বিক্ষোভ মিছিল করা হয়েছে।উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শাহজাহান কবির প্রথম আলোকে বলেন, ‘হত্যাকাণ্ডের পর আসামি গ্রেপ্তারে পুলিশের তৎপরতায় আমরা সন্তুষ্ট নয়। এ জন্য হরতাল অব্যাহত রাখা হয়েছে। শনিবার (আজ) সকাল ১০টায় একটি বৈঠক রয়েছে। ওই বৈঠকে পরবর্তী কর্মসূচি নির্ধারণ করা হবে।’ এদিকে হত্যাকাণ্ডের পর এক দিন পেরিয়ে গেলেও গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত থানায় কোনো মামলা হয়নি। ঘটনার সঙ্গে জড়িত কাউকে পুলিশ গ্রেপ্তার করতে পারেনি। তবে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য তিনজনকে আটক করা হয়েছে। এঁরা হলেন চৌগাছার জাহাঙ্গীরপুর গ্রামের বকুল ও পান্নু এবং দিঘলসিংহা গ্রামের রনি।চৌগাছা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) গোলাম রহমান প্রথম আলোকে বলেন, মামলা করার জন্য নিহত ব্যক্তির পরিবারের লোকজনকে একাধিকবার অনুরোধ করা হয়েছে। দাফন ও জানাজার কারণে তাঁরা মামলা করতে পারেননি। তবে মামলার প্রক্রিয়া চলছে বলে সন্ধ্যায় ওসি জানান।গতকাল বেলা সাড়ে ১১টায় নিহত চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানের প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হয় তাঁর নিজ গ্রাম পিতম্বরপুরে। পরে মরদেহ সিংহঝুলী ইউনিয়ন পরিষদে নেওয়া হয়। জুমার নামাজের পর বেলা আড়াইটায় চৌগাছা শাহাদৎ পাইলট মাধ্যমিক বিদ্যালয় মাঠে দ্বিতীয় জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। প্রবল বৃষ্টিপাতের মধ্যেও জানাজায় মানুষের ঢল নামে। পরে যশোর শহরের কারবালা কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়। গত বৃহস্পতিবার দুপুরে সিংহঝুলি ইউনিয়ন পরিষদ-সংলগ্ন শহীদ মশিউর রহমান মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের মাঠে চেয়ারম্যান জিল্লুর রহমানকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। তিনি যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি।সড়ক বিভাজনের মধ্যে লাগানো গাছের ফুল তুলে রাস্তা পার হচ্ছিল আট বছরের শিশু সোহেল মিয়া। এ সময় মোটরসাইকেল আরোহী তিন যুবক এসে কয়েকটি ককটেল নিক্ষেপ করে দ্রুত পালিয়ে যায়। একটি ককটেল বিস্ফোরিত হয় রাস্তায়। এতে শিশুটির হাত-পাসহ শরীর ঝলসে যায়। গতকাল সোমবার হরতাল চলাকালে সকাল সাতটার দিকে বগুড়া শহরের রেলস্টেশনসংলগ্ন সাতমাথা-তিনমাথা স্টেশন সড়কে এ ঘটনা ঘটে।সোহেলকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ (শজিমেক) হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সে সেউজগাড়ি রেলবস্তিতে মা-বাবার সঙ্গে থাকত। তার বাবা শহীদুল ইসলাম একজন রিকশাচালক। তিনি জানান, হাসপাতালে ভর্তির পর যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে সোহেল।শুধু সোহেল নয়, গতকাল হরতাল-সমর্থকদের ককটেলে আহত হয়েছে বগুড়ার আরও দুই পথশিশু। সকাল ১০টার দিকে শহরের স্টেশন ক্লাবসংলগ্ন ঝাউ-জঙ্গলে কাগজ কুড়াচ্ছিল শিশু রনি (৭) ও মিল্টন (৮)। সেখানে পড়ে ছিল অবিস্ফোরিত একটি ককটেল। কৌতূহলবশত লাল কাগজে মোড়ানো ককটেল দুটি একজন হাতে নিলে তা বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হয়। এতে স্প্লিন্টারের আঘাতে মারাত্মক আহত হয় তারা।স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে তাদের শজিমেক হাসপাতালে ভর্তি করে। রনি ও মিল্টন দুজনই বর্তমানে হাসপাতালের বিছানায় কাতরাচ্ছে। শহরের বউবাজার এলাকায় তারা দুজন থাকত বলে জানা গেছে।পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, ‘লাল কাগজে মোড়ানো ককটেল কৌতূহলবশত হাতে নিয়ে নাড়াচাড়া করার সময় তা বিস্ফোরিত হয়ে আহত হয়েছে দুই শিশু। তাদের শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। স্টেশন সড়কেও অবিস্ফোরিত ককটেল হাতে নেওয়ার পর তা বিস্ফোরিত হয়েছে বলে আমাকে পুলিশ জানিয়েছে। আহত শিশুদের বিস্তারিত নাম-ঠিকানা সংগ্রহ করার জন্য পুলিশকে বলা হয়েছে।’টেন্ডুলকারের প্রশংসা করেছেন তো মরেছেন! পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমকে এমন হুমকি দিয়েছে তালেবান। লিটল মাস্টারের বিদায়ে আপ্লুত গোটা ক্রিকেট-বিশ্ব। চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী হলেও সে আবেগ চেপে রাখেনি পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যম। আর তাতেই খেপেছে পাকিস্তানি তালেবানরা। শুধু ক্রিকেটে প্রতিপক্ষ তো নয়, ভারত যে পাকিস্তানের রাজনৈতিক চিরশত্রুও। আর সেই শত্রুদেশের ক্রিকেটারের প্রশংসা? এক ভিডিও বার্তায় তালেবানরা হুমকি দিয়েছে, এরপর থেকে পাকিস্তানি সংবাদমাধ্যমকে টেন্ডুলকারের প্রশংসা করতে দেখলে ছেড়ে দেওয়া হবে না। একে-৪৭ হাতে মুখোশ পরা সেই তালেবানের হুমকিতে পাকিস্তানে টেন্ডুলকার-বন্দনা সত্যিই বন্ধ হয় কি না দেখা যাক। ওয়েবসাইট।অনুমতি মেলেনি। ফলে মঞ্চও তৈরি হয়নি। নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়েও কেউ নেই। গতকাল শনিবার রাত পর্যন্ত দলের সর্বশেষ বক্তব্যটি এসেছে প্রেসক্লাবে করা সংবাদ সম্মেলন থেকে। ফলে আজ রোববার বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের পূর্বঘোষিত ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ নিয়ে সংশয় আর আতঙ্কই কেবল থাকল। সরকারি দল প্রতিরোধের জন্য প্রস্তুত। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী ‘জানমালের নিরাপত্তা’ রক্ষায় প্রস্তুত। বিএনপি যেকোনো মূল্যে কর্মসূচি পালনের জন্য প্রস্তুত। খালেদা জিয়াও কর্মসূচিতে যোগ দিতে প্রস্তুত। ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ‘শেষ বড় কর্মসূচির জন্য প্রস্তুত’ জামায়াতও। বিএনপি-জামায়াতের নেতারা বলেছেন, ঢাকায় বাধা পেলে তাঁরা সারা দেশে ‘প্রতিরোধ’ গড়ে তুলবেন, সে প্রস্তুতিও তাঁদের আছে। সেটা সহিংসতায় রূপ নিতে পারে। এর মধ্যে অরাজনৈতিক সংগঠন বলে দাবিদার হেফাজতে ইসলামের ‘যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ও কার্যকর ভূমিকা পালন করার আহ্বান’ পরিস্থিতিতে নতুন মাত্রা যুক্ত করেছে। সাধারণ মানুষের আতঙ্কের কারণ সরকার ও বিরোধী পক্ষের এই পরস্পরবিরোধী প্রস্তুতি। আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচন প্রতিহত করতে আজকের মার্চ ফর ডেমোক্রেসি বা গণতন্ত্রের অভিযাত্রা। বিএনপি জানিয়েছে, দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উপস্থিতিতে আজ সকাল ১০টা থেকে ১১টার মধ্যে পল্টনমুখী অভিযাত্রা হবেই। এমন বক্তব্য, ভিডিও বার্তা, সংবাদ বিজ্ঞপ্তির বাইরে এই কর্মসূচি সফল করতে আর কোনো দৃশ্যমান তৎপরতা চালাতে পারেনি বা দেখা যায়নি বিএনপি-জামায়াত জোটের। গত মঙ্গলবার এই কর্মসূচি ঘোষণার পর দৃশ্যমান সব প্রস্তুতি ছিল মূলত পুলিশের এবং তা এই ‘অভিযাত্রা’ ঠেকানোর জন্য। সর্বশেষ গত রাত নয়টার দিকে খালেদা জিয়ার নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা পুলিশ সদস্যকে সরিয়ে নেওয়া হয় বলেও দাবি এসেছে বিএনপির পক্ষ থেকে। তবে পুলিশ বলছে, তাঁর প্রটোকলে কোনো হেরফের করা হয়নি। এর মধ্যে সরকারের একাধিক মন্ত্রী এবং সর্বশেষ সরকারি দল আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম এই কর্মসূচি প্রতিরোধের ডাকও দিয়েছেন। গতকাল ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগ বিভিন্ন ওয়ার্ডে মিছিল সমাবেশ করেছে। আজ তারা ঢাকার পাঁচটি প্রবেশমুখে অবস্থান নেবে প্রতিরোধের জন্য। সপ্তাহে দু-এক দিনের বিরতি দিয়ে এক মাসের ‘সহিংস’ অবরোধ শেষে ঢাকায় গণতন্ত্রের অভিযাত্রার ডাক দিয়েছিল বিএনপি। সারা দেশ থেকে এসে আজ সেই অভিযাত্রার শেষ গন্তব্য হওয়ার কথা ছিল নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে। কিন্তু এই অভিযাত্রা মোকাবিলা করতে গিয়ে গত দুই দিন সরকারই সড়ক, রেল ও নৌপথ কার্যত অবরোধ করে ফেলে। বিরোধী জোটের টানা অবরোধের পীড়িত, আতঙ্কিত জনগণ গত দুই দিনে আবার চরম বিড়ম্বনার শিকার হয়। এর সঙ্গে দেশব্যাপী ধরপাকড়, ঢাকায় আগেই বিরোধী দলের কর্মীরা পৌঁছে যাওয়ার আতঙ্কে শহরজুড়ে তল্লাশি এবং অভিযাত্রাকারীদের সম্ভাব্য ‘প্রতিক্রিয়া’ নিয়ে উদ্বিগ্ন-উৎকণ্ঠিত মানুষ। গত তিন দিনে সারা দেশে এক হাজারের বেশি লোককে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। এঁদের অধিকাংশ বিএনপি-জামায়াতের কর্মী। বিএনপির নেতারা আশঙ্কা করছেন, সরকার হয়তো খালেদা জিয়াকে তাঁর গুলশানের বাসা থেকে বের হতে না-ও দিতে পারে। খালেদা জিয়া নিজেও এমন আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন। গত শুক্রবার এক ভিডিও বার্তায় বলেছেন, তিনি আসতে না পারলেও দলীয় নেতা-কর্মীরা যেন কর্মসূচি সফল করেন। তবে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান হাফিজউদ্দিন আহমেদ বলেছেন, আজকের সমাবেশ হবেই এবং তাতে খালেদা জিয়া যোগ দেবেন। বিকেলে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেছেন, পুরোপুরি না হলেও চেয়ারপারসন অনেকটাই গৃহবন্দী। তাঁর সঙ্গে কেউ দেখা করতে গেলে আটক করা হচ্ছে। তার পরও তিনি গণতন্ত্র রক্ষায় আজকের সমাবেশে যোগ দেবেন। অবশ্য গত রাত ১০টার পর জাতীয় প্রেসক্লাবের একটি প্রতিনিধিদল ও বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের একাংশের নেতারা খালেদা জিয়ার বাসায় গেছেন। তাঁরা বেরিয়ে এসে জানান, খালেদা জিয়া কর্মসূচিতে যোগদানের সিদ্ধান্তে অটল আছেন। তার আগে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বিবিসিকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে খালেদা জিয়াকে যে পুলিশ দেওয়া হয়েছিল, তাদের প্রত্যাহার করা হয়েছে। তাঁর বাসার সামনে ব্যারিকেড দেওয়া হয়েছে। তাঁর গাড়ি বের করতে মানা করা হয়েছে। তবে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বিবিসিকে বলেছেন, ‘খালেদা জিয়ার নিরাপত্তা প্রত্যাহার করা হয়নি। তাঁকে অবরুদ্ধ করা নয়, অনুরোধ করা হচ্ছে, আপনি জোর করে রাষ্ট্রকে বিপদে ফেলবেন না।’ তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা খালেদা জিয়ার সর্বোচ্চ নিরাপত্তার ব্যবস্থা রাখি। কিন্তু আজকে যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, চোরাগোপ্তা হামলা হচ্ছে। এ অবস্থায় তিনি কোনো কর্মসূচিতে গিয়ে রাজপথে বসে পড়লে সেখানে নিরাপত্তা দেওয়া কষ্টকর হয়ে পড়বে। সে ক্ষেত্রে তিনি বাসভবনে অবস্থান করাই মঙ্গলজনক।’ আজকের কর্মসূচির সমন্বয়ের দায়িত্বে থাকা বিএনপির একাধিক নেতা বলেছেন, বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীসহ জোটের শরিক দলের অসংখ্য নেতা-কর্মী ঢাকায় পৌঁছেছেন। তাঁরা সকাল থেকেই নয়াপল্টনে যাওয়ার চেষ্টা করবেন। খালেদা জিয়া আজ যেকোনো সময় বাসা থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করবেন। ঢাকায় পুলিশের ব্যাপক প্রস্তুতি: ‘জানমালের নিরাপত্তা রক্ষায়’ ঢাকায় ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। শুধু রাজধানীতেই মোতায়েন থাকবে ১০ হাজার পুলিশ। এ ছাড়া সাদাপোশাকে গোয়েন্দারা তো থাকবেনই। পুলিশের পাশাপাশি র্যাব থাকবে। সশস্ত্র বাহিনী ও বিজিবির সদস্যরা স্ট্রাইকিং ফোর্স হিসেবে থাকবেন। তবে বিএনপি বলছে, এই আয়োজন তাদের কর্মসূচি ঠেকানোর জন্য হচ্ছে। তারা শুনেছে, পুলিশকে সরাসরি গুলি করার নির্দেশ দেওয়া আছে।ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ (ডিএমপি) জানায়, পুলিশ নয়াপল্টনে ঢোকার সব পথে অবস্থান নেবে। সাধারণ মানুষ এসব এলাকা হেঁটে পার হতে পারবেন, তবে কাউকে কোনো স্থানে দাঁড়াতে দেওয়া হবে না। পুলিশের জনসংযোগ বিভাগের উপকমিশনার মাসুদুর রহমান বলেছেন, জনগণের জানমাল রক্ষার জন্য যা যা করার দরকার, পুলিশ তা-ই করবে। খালেদা জিয়াকে নয়াপল্টনে আসতে দেওয়া হবে কি না জানতে চাইলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকা মহানগর পুলিশের একজন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা যখন জানছি, তিনি আসলে নাশকতা হবে, তখন কেন তাঁকে মুভ করতে দেব।’তবে সরকারের নির্ভরযোগ্য সূত্রে জানা গেছে, খালেদা জিয়া যদি বের হয়েই যান তাহলে তাঁকে বড়জোর জাতীয় প্রেসক্লাবে আসার সুযোগ দেওয়া হতে পারে।মূল প্রতিরোধ হবে ঢাকার বাইরে: নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএনপির স্থায়ী কমিটির একজন সদস্য জানান, ঢাকায় কর্মসূচি করতে দেওয়া না হলে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া দেখাবে বিএনপি ও জামায়াত। এই প্রতিক্রিয়া ঢাকার বাইরে অনেক বেশি জোরালো হতে পারে। এই নেতা বলেন, ‘বাধা এলে কর্মসূচি আর শান্তিপূর্ণ থাকবে না। বলা যায়, নাশকতা ও সহিংসতার দিকে যাবে। বিএনপি ও জামায়াত-অধ্যুষিত এলাকাগুলোতে দলীয় নেতা-কর্মীরা এর জন্য প্রস্তুত থাকবেন।’মাঠে থাকবে জামায়াত: কর্মসূচিতে ‘দলে-বলে’ অংশ নেওয়ার প্রস্তুতি নিয়েছে জামায়াত ও ছাত্রশিবির। ইতিমধ্যে দলের বিপুলসংখ্যক কর্মী-সমর্থক রাজধানীতে এসে পৌঁছেছেন বলে জামায়াতের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের আগে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ সরকারের বিরুদ্ধে সর্বশেষ কর্মসূচি ধরে নিয়ে জামায়াত নেতা-কর্মীদের নির্দেশনা দিয়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর বাধা বা প্রতিরোধের মুখে পড়তে হতে পারে, এটা বিবেচনায় রেখেই কর্মীদের সেভাবে প্রস্তুতি নিতে বলা হয়েছে। পাল্টা প্রতিরোধ গড়ার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।জানতে চাইলে জামায়াতের কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদের সদস্য ও সাংসদ হামিদুর রহমান আযাদ প্রথম আলোকে বলেন, সভা-সমাবেশ গণতান্ত্রিক অধিকার। জনগণ যেকোনো মূল্যে এ অধিকার প্রতিষ্ঠা করবে। পরোক্ষ সমর্থন হেফাজতের: প্রধানমন্ত্রীর সামরিক সচিব মেজর জেনারেল জয়নাল আবেদীন গতকাল সকালে হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে চট্টগ্রামের হাটহাজারী মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা করেন। তিনি আজকের কর্মসূচিতে হেফাজত-সংশ্লিষ্ট ইসলামি দলগুলোকে অংশগ্রহণ করা থেকে বিরত রাখার জন্য অনুরোধ করেন। হেফাজতের কেন্দ্রীয় যুগ্ম মহাসচিব মাঈনুদ্দীন রুহী বলেন, অনুরোধের জবাবে আহমদ শফী বলেছেন, এ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করা না-করা হেফাজত-সমর্থিত ইসলামি দলগুলোর নিজস্ব ব্যাপার। তবে সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় শাহ আহমদ শফী ‘দেশ, জাতি ও ইমান রক্ষায় এগিয়ে আসুন’—এ আহ্বান জানিয়ে গণমাধ্যমে একটি খোলা চিঠি পাঠান। তাতে তিনি বর্তমান ভয়াবহ পরিস্থিতির জন্য আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারকে দায়ী করেন। চিঠিতে বলা হয়, ‘দেশে বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তাতে দেশের কোনো নাগরিকই চুপ করে বসে থাকতে পারে না। এ অবস্থায় যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ও কার্যকর ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানাচ্ছি।’ আ.লীগ ও সরকারের পাল্টা প্রস্তুতি: রাজধানীতে আজ আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় থাকবেন। আওয়ামী লীগের নেতারা জানান, সকাল থেকেই নেতা-কর্মীরা রাজধানীর গাবতলী, টঙ্গী ব্রিজ, সদরঘাট, কমলাপুর রেলস্টেশন, যাত্রাবাড়ী—এই পাঁচটি প্রবেশদ্বারে থাকবেন। নেতা-কর্মীদের রাজপথে থাকার আহ্বান জানিয়ে যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘আমরা কোনো আক্রমণ করব না। তবে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিঘ্নিত হলে প্রতিহত করা হবে।’
নির্বাচনকালীন নির্দলীয় সরকারের দাবিতে আন্দোলনের পাশাপাশি বিএনপি নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কাজও চালাচ্ছে। বিএনপিপন্থী বুদ্ধিজীবীরা ইশতেহারের একটি খসড়া গত বৃহস্পতিবার রাতে দলীয় চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে দেখিয়েছেন।বিএনপির একটি সূত্র জানিয়েছে, ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) জন্য প্রস্তাবিত রূপকল্প-২০৩০’ শীর্ষক খসড়ার প্রথমেই বলা হয়েছে, বিভেদ নয়, ঐক্যের বিভিন্ন রাজনীতি করা হবে। প্রতিহিংসার রাজনীতি করা হবে না। এতে বিভিন্ন খাতে উন্নয়নের রূপকল্প তুলে ধরার পাশাপাশি নতুন ধারার রাজনীতি ও সরকার গঠনের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। জনগণকে দেওয়া গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতির মধ্যে আছে, ২০৩০ সালের মধ্যে মানুষের মাথাপিছু আয় চার থেকে পাঁচ হাজার মার্কিন ডলারে নিয়ে যাওয়া, কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা, পুলিশ সংস্কার কমিশন গঠন, সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদের ব্যাপারে কোনো ছাড় না দেওয়া, ছেলেদের জন্যও দশম শ্রেণী পর্যন্ত বিনা বেতনে পড়ার সুযোগ, প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর জন্য জীবন ও স্বাস্থ্য বিমা চালু, কৃষি ও পশুপালনের ক্ষেত্রগুলোকে বিমার আওতায় আনা ইত্যাদি।সূত্র জানায়, ২০০৮-এর নির্বাচনের সময় আওয়ামী লীগ তাদের নির্বাচনী ইশতেহারে রূপকল্প-২০২১ তুলে ধরে। বিএনপি তখন জনগণকে স্বপ্ন দেখানোর মতো কিছু ইশতেহারে তুলে ধরতে পারেনি। এবার তাই ইশতেহার ও স্লোগান নিয়ে আগে থেকেই কাজ শুরু করেছে দলটি। তরুণ ভোটারদের আকৃষ্ট করতে ইশতেহার নিয়ে চলছে নানা চিন্তা ও তৎপরতা। ‘নতুন ধারা সরকার ও রাজনীতি’ হতে পারে দলটির পরবর্তী নির্বাচনী স্লোগান।বিএনপির একজন দায়িত্বশীল নেতা প্রথম আলোকে বলেন, ইশতেহার এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নানা প্রস্তাব আসছে। সবকিছু যাচাই-বাছাই করে একটি আধুনিক ও যুগোপযোগী ইশতেহার ও স্লোগান তুলে ধরা হবে।‘বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৩’-এর খসড়া গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিবেচিত বিষয়ের (এজেন্ডা) তালিকা থেকে প্রত্যাহার করে নিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়।বৈঠকের পর শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা মনে করছি, বিষয়টি আরও যাচাই-বাছাই হওয়া প্রয়োজন। এ জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হয়নি। যাচাই-বাছাইয়ের পর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’প্রস্তাবিত আইনের খসড়া অনুযায়ী, ১৬ সদস্যবিশিষ্ট কওমি শিক্ষা কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান হবেন কওমি শিক্ষা ও ব্যবস্থাপনায় অভিজ্ঞ একজন শীর্ষ পর্যায়ের আলেম। এতে কওমি শিক্ষার ক্ষেত্রে শীর্ষস্থানীয় সাতজন আলেম, যুগ্ম সচিব পর্যায়ের একজন সরকারের প্রতিনিধি, মহিলা কওমি মাদ্রাসার একজন প্রতিনিধি ও পাঁচটি কওমি মাদ্রাসার প্রধান বা সচিব পদাধিকারবলে কর্তৃপক্ষের সদস্য হবেন এবং একজন সচিব থাকবেন। ইতিমধ্যে এ আইনের খসড়া অর্থ, জনপ্রশাসন ও প্রশাসনিক উন্নয়নসংক্রান্ত সচিব কমিটির সভায় অনুমোদন পেয়েছে।কওমি আলেমদের একটি অংশ শুরু থেকেই সরকারের কওমি শিক্ষা কর্তৃপক্ষ গঠনের উদ্যোগের বিরোধিতা করে আসছেন। গত রোববার হেফাজতে ইসলামের আমির ও কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান শাহ আহমদ শফী বলেছেন, কওমি মাদ্রাসা আইন পাস হলে দেশে গৃহযুদ্ধ শুরু হবে। তিনি আইনটি পাস করা থেকে বিরত থাকার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।কওমি কর্তৃপক্ষের সমর্থনে সংবাদ সম্মেলন: গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে কওমি ছাত্র-শিক্ষক কল্যাণ পরিষদ এ ধরনের উদ্যোগ সমর্থন করে সংবাদ সম্মেলন করে। তাদের দাবি, ভারতে দেওবন্দ মাদ্রাসার আটটি মূলনীতির ওপর ভিত্তি করে ১৫ সদস্যের কওমি শিক্ষা কর্তৃপক্ষ গঠনের প্রস্তাব করা হয়। এঁদের ১৪ জনই হবেন কওমি আলেম। সংশোধিত কওমি শিক্ষা কর্তৃপক্ষের বিষয়ে মাওলানা আশরাফ আলী, আনওয়ার শাহ, আবদুল হালিম বোখারি, মাহমুদুল হাসান প্রমুখ বিশিষ্ট আলেমের সমর্থন আছে বলেও জানানো হয়।ইসলামিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এতে ফাউন্ডেশনের বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তা ও প্রশিক্ষণার্থীরা অংশ নেন। কওমি ছাত্র-শিক্ষক কল্যাণ পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল লতিফ চৌধুরী লিখিত বক্তব্য পড়েন।জানতে চাইলে যাত্রাবাড়ী মাদ্রাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মাহমুদুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি কিছু সংশোধনী দিয়েছি। তাতে সরকার কোনো উসুলি (মৌলিক) পরিবর্তন আনলে সমর্থন করব না।’ আর চট্টগ্রামের পটিয়া মাদ্রাসার পরিচালক আবদুল হালিম বোখারি সমর্থনের কথা অস্বীকার করে বলেন, ‘সরকার কী সংশোধনী এনেছে, তা হাতে পেলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেব।’প্রত্যাখ্যান করেছে বেফাক: বাংলাদেশ কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা বোর্ড (বেফাক) গতকাল সোমবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে সরকারের প্রস্তাবিত ‘কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ আইন, ২০১৩’ প্রত্যাখ্যান করেছে।বেফাকের মহাসচিব মাওলানা আবদুল জব্বার বলেন, কওমি মাদ্রাসা শিক্ষা কর্তৃপক্ষ প্রতিরোধে প্রয়োজনে রক্ত দেওয়ার জন্য প্রস্তুত আছে। সরকারের নিয়ন্ত্রণ ও কর্তৃত্বাধীন কোনো কর্তৃপক্ষের সঙ্গে তাঁরা যুক্ত হবেন না।আর্কটিক রেখা ছাড়িয়ে আরও সাড়ে তিন শ কিলোমিটার গেলেই দেখা মিলবে ট্রুমসা ফুটবল ক্লাবের। ইউরোপা লিগে খেলা নরওয়ের এই ক্লাবটিই বিশ্বের সবচেয়ে উত্তরের ক্লাব।সাবেক এক নম্বর খেলোয়াড়দের কোচ করাটা কি নিয়মই হয়ে গেল?ইভান লেন্ডলকে কোচ করে অধরা গ্র্যান্ড স্লাম জিতেছেন অ্যান্ডি মারে। তাতে অনুপ্রাণিত হয়েই কদিন আগে আরেক কিংবদন্তি বরিস বেকারকে কোচ করেছেন নোভাক জোকোভিচ। রজার ফেদেরার বাদ থাকবেন কেন? সুইস তারকাও হাঁটলেন মারে-জোকোভিচের দেখানো পথে। সুইডেনের সাবেক এক নম্বর খেলোয়াড় স্টেফান এডবার্গকে কোচ করেছেন ফেদেরার।পরশু খবরটি দিয়েছেন ১৭টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী ফেদেরার নিজেই, ‘মেলবোর্নে এসে প্রথমেই আমি আনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি, সেভেরিন লুথির সঙ্গে আমার কোচিং দলে যোগ দিচ্ছেন স্টেফান এডবার্গ।’ ৬টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী এডবার্গই ফেদেরারের শৈশবের নায়ক। তাঁকে কোচ করে ফেদেরার আসলে নিন্দুকদের প্রতি একটা বার্তা পাঠালেন—যত যা-ই বলা হোক, অবসরের ভাবনা তাঁর মাথায়ই নেই। দুঃসময়কে পেছনে ফেলে তিনি বরং শিগগিরই পুরোনো রূপে ফিরতে উদগ্রিব, ‘স্টেফান আমার ছোটবেলার হিরো। তার সঙ্গে আমি কিছু দুর্দান্ত সময় কাটাতে চাই এবং শিখতে চাই।’ফেদেরারের মতো গ্রেট খেলোয়াড়ের কোচ হতে পেরে ৪৭ বছর বয়সী এডবার্গও উচ্ছ্বসিত, ‘আমি সত্যিই রজারের কোচিং দলের অংশ হতে পেরে রোমাঞ্চিত। আশা করি, আমরা একসঙ্গে কাজ করে তার থেকে সেরা টেনিসটা বের করে আনতে পারব।’ ফেদেরারের সঙ্গে জুটি বেঁধে এডবার্গ কাজ করবেন ১০ সপ্তাহ।চোট আর বাজে ফর্ম মিলিয়ে ২০১৩ সালটা একেবারেই বাজে কেটেছে ফেদেরারের। একটি মাত্র শিরোপা জিতেছেন। ২০০২ সালের পর এই প্রথম কোনো গ্র্যান্ড স্লামের ফাইনালে উঠতে পারেননি। দুঃসময়কে পেছনে ফেলে নতুন বছরে নতুন করে শুরু করতে কতটা মরিয়া তার প্রমাণ, ১৬ বছরের ক্যারিয়ারে এই প্রথম খেলতে যাচ্ছেন বছর শুরুর টুর্নামেন্ট ব্রিসবেন ইন্টারন্যাশনালে! লক্ষ্য বছরের প্রথম গ্র্যান্ড স্লাম অস্ট্রেলিয়া ওপেনের আগে নিজেকে পুরোপুরি প্রস্তুত করা। এটাই হয়তো তাঁর শেষ অস্ট্রেলিয়ান ওপেন। ২০১৪ সালেই ফেদেরার বিদায় বলে দিতে পারেন বলেই আভাস। সম্ভাব্য বিদায়ী বছরটায় ফেদেরার কোর্টে কাটাতে চান দারুণভাবে। ৩২ বছর বয়সী সুইস তারকার দাবি, গত মৌসুমের তুলনায় তিনি এখন অনেক ফিট ও আত্মবিশ্বাসী, ‘যতটা ভেবেছিলাম, আমি তার চেয়ে ভালো খেলেছি। এটা আমাকে অনুপ্রাণিত করছে।’ এএফপি।
রামপালে কয়লাভিত্তিক যে বিদ্যুৎকেন্দ্র তৈরি করা হচ্ছে সেটিকে প্রকৃতিবিনাশী আখ্যা দিয়ে এর নির্মাণকাজ বন্ধের দাবি করেছেন নাগরিক সমাজের কয়েকজন। গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটি আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে প্রকল্পটির উদ্বোধন করা থেকে বিরত থাকতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে দাবিও করেন তাঁরা।আলোচনায় লেখক, সাংবাদিক সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, বিদ্যুৎকেন্দ্র আমরা চাই। কিন্তু যেখানে এটি করার কথা হচ্ছে,তা করা হলে সুন্দরবনহয়ে যাবে অ-সুন্দরবন। যেখানে দেশের বিজ্ঞানীরা এটা বিরোধিতা করছেন, সেখানে এটি নির্মাণের প্রচেষ্টা সম্পূর্ণ জাতীয় স্বার্থবিরোধী।সংবাদ সম্মেলনে মূল বক্তব্য পড়েন সুন্দরবন রক্ষা জাতীয় কমিটির সদস্য সচিব আবদুল মতিন। তিনি বলেন, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র কোনোভাবেই জনগণের স্বার্থ রক্ষা হবে না।আবদুল মতিন বলেন, ‘আমরা এই প্রকল্পের বিরোধিতা করছি না, আমরা শুধু এই স্থানটি বিবেচনার জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি।’অধ্যাপক বদিউল আলম মজুমদার বলেন, সরকার জনগণের মতামত ও স্বার্থকে উপেক্ষা করছে। গণতান্ত্রিক সরকারের কাছে আমরা এটি আশা করি না।শুধু রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র বন্ধ নয়, সুন্দরবন ধ্বংসকারী সব কার্যক্রম অবিলম্বে বন্ধ করা হোক, আলোচনায় এই দাবি করেন বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতির (বেলা) প্রধান নির্বাহী সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।রামপাল তাপবিদ্যুৎকেন্দ্র বিষয়ে সর্বশেষ পরিবেশগত প্রভাব নিরূপণ প্রতিবেদন ও চুক্তির বিস্তারিত তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করার দাবি জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।দেশের স্বার্থের কথা চিন্তা না করে একটি বিশেষ মহলের স্বার্থ রক্ষার জন্য সুন্দরবন ধ্বংসের এ কাজ চলছে, এই অভিযোগ করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল।সভায় সরকারি-বেসরকারি, দেশি-বিদেশি বিজ্ঞানী ও পেশাজীবী এবং সামাজিক আন্দোলনের প্রতিনিধিদের সমন্বয়ে একটি নির্মোহ আলোচনার মাধ্যমে এই প্রকল্প সমীক্ষা প্রতিবেদন মূল্যায়ন করার দাবি করা হয়। বিজ্ঞপ্তি।জাতীয় সংসদ নির্বাচনের জন্য আওয়ামী লীগ ও এর নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোটের শরিকেরা পৃথকভাবে দলীয় প্রার্থী বাছাই শুরু করেছে। এরই মধ্যে আওয়ামী লীগের ৩০০ আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের প্রাথমিক তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। এতে বেশির ভাগ আসনেই বিকল্প হিসেবে একাধিক নাম রাখা হয়েছে। কয়েকটি শরিক দলও তাদের প্রার্থীর তালিকা অনেকটা প্রস্তুত করে ফেলেছে বলে দলগুলোর বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে।আওয়ামী লীগের একাধিক সূত্র জানায়, আসন্ন নির্বাচনে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি অংশগ্রহণ করবে কি না, তার ওপর নির্ভর করছে জোটের আসন ভাগাভাগির কাজ। এ কারণে শরিক দলগুলোকে আলাদাভাবে প্রার্থী বাছাই করতে বলা হয়েছে।এদিকে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বিএনপির সঙ্গে সমঝোতা হচ্ছে না ধরে নিয়েই প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ‘সর্বদলীয় অন্তর্বর্তী সরকার’ গঠনের প্রস্তুতি নেওয়া হচ্ছে বলে সরকারি দলের একাধিক নেতা ও মন্ত্রীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে। এতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাই নির্বাচন-কালীন সরকারের প্রধান থাকবেন। এ ক্ষেত্রে মন্ত্রিসভা হবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন বিরোধী দলের বাইরের দলগুলোর সমন্বয়ে। অন্তর্বর্তী এই মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা ১০-এর মধ্যে রাখার চিন্তা রয়েছে। আর বিএনপি সমঝোতায় এলে এই মন্ত্রিসভার সদস্যসংখ্যা সর্বোচ্চ ২০ জন পর্যন্ত করার চিন্তা আছে।এ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী গতকাল সোমবার মন্ত্রিসভার বৈঠকে কিছুটা আলোচনাও করেছেন। বৈঠকসংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী জানান, সর্বদলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করে নির্বাচনের অনুষ্ঠান করা হবে। বিএনপি নির্বাচনে না এলে অন্যান্য দলের সঙ্গে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হবে। ইতিমধ্যে কয়েকটি দলের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে। অন্যান্য দলের সঙ্গেও হবে।এর মধ্যে আজ মঙ্গলবার সিপিবি-বাসদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠকের কথা রয়েছে। এ ছাড়া বিরোধী দল সংলাপের প্রক্রিয়া থেকে বেরিয়ে গেলে জানুয়ারির আগেই নির্বাচন সম্পন্ন করারও চিন্তা রয়েছে বলে অসমর্থিত একটি সূত্র জানিয়েছে।জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মতিয়া চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, আওয়ামী লীগ নির্বাচনমুখী দল। দিন-তারিখ যা-ই হোক, সংবিধান হচ্ছে ভিত্তি। এর মধ্যেই নির্বাচন হবে। প্রধানমন্ত্রী সর্বদলীয় সরকারের প্রস্তাব দিয়েছেন। বিরোধী দল এলে আলোচনা করে তাদেরও অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা হবে।১৪-দলীয় জোটের একাধিক সূত্র জানিয়েছে, বিএনপি নির্বাচন বর্জন করলে শরিক দলগুলো আলাদাভাবে নির্বাচন করবে। তখন শরিক দলের বড় নেতারা যাতে আওয়ামী লীগের প্রার্থীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতায় না পড়েন, সেটা বিবেচনায় রেখেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী ঠিক করা হবে। আর বিএনপি নির্বাচনে এলে আওয়ামী লীগ জোটের শরিকদের সঙ্গে আসন ভাগাভাগি করে জোট-গতভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করবে।এ বিষয়ে জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফর উল্যাহ প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত ১৪-দলীয় জোট আছে। তবে জোটগত, নাকি আলাদাভাবে নির্বাচনে অংশ নেবে, সেটা ঠিক করার সময় এখনো শেষ হয়ে যায়নি।শরিকদের প্রস্তুতি: আওয়ামী লীগ আগামী ১০ নভেম্বর থেকে দলীয় মনোনয়নপত্র বিক্রির সিদ্ধান্ত নিলেও শরিকদের মধ্যে অনেক দলেরই মনোনয়নপত্র বিক্রির রেওয়াজ নেই। ফলে তাঁরা দলীয় ফোরামে আলোচনা করেই প্রার্থী ঠিক করেন। এর মধ্যে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে—এমন ৪০ জনের নামের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। ২৫ ও ২৬ অক্টোবর ওয়ার্কার্স পার্টির কেন্দ্রীয় কমিটি এই তালিকা চূড়ান্ত করে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের ৩০ জনের বেশি সম্ভাব্য প্রার্থী কাজ করছেন।এখন বিরোধী দল নির্বাচনে এলে একধরনের হিসাব, মহাজোট থাকলে আরেক হিসাব এবং বিরোধী দল না এলে আরেকভাবে হিসাব করে মাঠে নামতে হবে। তিনি বলেন, তাঁরা প্রস্তুতির পাশাপাশি সংলাপ হয় কি না, সেদিকেও চেয়ে আছেন।গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নূরুর রহমান সেলিম বলেন, এখন পর্যন্ত জোটগতভাবে এবং সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন হবে বলে তাঁরা আশা করছেন। তাঁদের দল থেকে সম্ভাব্য প্রার্থী হিসেবে ১০ জনের তালিকা চূড়ান্ত করা হয়েছে।এর বাইরে ১৪ দলের অন্য শরিকদের গত নির্বাচনেও জোটের মনোনয়ন দেওয়া হয়নি। সাম্যবাদী দলের দিলীপ বড়ুয়াকে টেকনোক্র্যাট মন্ত্রী করা হয়।জাপার সঙ্গে বোঝাপড়া হয়নি: প্রার্থী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ক্ষমতাসীন মহাজোটের অন্যতম শরিক জাতীয় পার্টিকে (জাপা) কতটা আসনে ছাড় দেওয়া হবে, বিএনপি না এলে দলটি নির্বাচনে আসবে কি না, সর্বদলীয় সরকার হলে তাতে জাপা থাকবে না—এসব বিষয়ে দলটির সঙ্গে এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগের বোঝাপড়া হয়নি। তবে আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায় থেকে মনে করা হচ্ছে, নানা হিসাব-নিকাশে ব্যস্ত জাপা শেষ পর্যন্ত নির্বাচনে আসবে। কারণ, তাঁর ওপর এখন মঞ্জুর হত্যা মামলার খড়্গ রয়েছে। তা ছাড়া প্রতিবেশী একটি দেশের প্রভাব এড়ানো জাপার চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের পক্ষে খুব সহজ নয়।জাপার দায়িত্বশীল একাধিক নেতা প্রথম আলোকে বলেন, এরশাদ বিরোধী দলের শক্তি দেখে পরবর্তী পদক্ষেপ নেবেন। এ জন্য এখন তিনি মধ্যপন্থা অবলম্বন করছেন। বিএনপির ক্ষমতায় আসার সম্ভাবনা না দেখলে তিনি সরকারের সঙ্গেই থাকবেন বলে মনে করা হচ্ছে।সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক: গত রোববার রাতে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে তাঁর সরকারি বাসভবন গণভবনে দলের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক হয়। এতে ১০ নভেম্বর আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্র বিক্রি শুরু করার সিদ্ধান্ত হয় বলে বৈঠকে উপস্থিত একাধিক নেতা জানান। তবে এখনো এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা আসেনি। পরিবেশ-পরিস্থিতি বুঝে মনোনয়নপত্র বিক্রির তারিখ এগিয়ে বা পিছিয়ে যেতে পারে বলেও সংসদীয় বোর্ডের একজন সদস্য জানান।বৈঠকসংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আওয়ামী লীগের মনোনয়নপত্রের দাম ১০ হাজার থেকে বাড়িয়ে ২৫ হাজার টাকা করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।ফেডারেশন কাপ: কোয়ার্টার ফাইনালমোহামেডান-শেখ জামাল(সরাসরি, বিকেল ৫টা, বিটিভি)ইউরোপা লিগট্রুমসা-টটেনহাম, সোয়ানসি-ভ্যালেন্সিয়া(সরাসরি, রাত ১২টা ও ২-০৫ মি., টেন অ্যাকশন)লিওঁ-বেটিস, উইগান-জুলটে বারেগেম(সরাসরি, রাত ১২টা ও ২-০৫ মি., টেন স্পোর্টস)সেভিয়া-এস্ত্রোলি, লুদোগোরেৎস-পিএসভি(সরাসরি, রাত ১২টা ও ২-০৫ মি., টেন এইচডি)গলফ: ইন্দোনেশিয়ান ওপেন(সরাসরি, দুপুর ১২টা, টেন গলফ)সড়ক, নৌ ও রেলপথ বন্ধ করে দিয়ে সরকার সারা দেশ থেকে রাজধানী ঢাকাকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেছে। রাজধানীর ভেতরে যাতে কোনো বাস ঢুকতে না পারে, সে জন্য পথে পথে পুলিশ ও সরকারি দলের নেতা-কর্মীরা পাহারা বসিয়েছেন।১৮-দলীয় জোটের ঢাকা অভিমুখে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচি আজ রোববার। এ কর্মসূচি ঠেকাতে গত শুক্রবার থেকেই তৎপরতা শুরু করেছে সরকার। সরকারি দল আওয়ামী লীগ এই অভিযাত্রা প্রতিহত করার ডাক দিয়েছে। গতকাল শনিবার কড়া নজরদারি ভেদ করে ঢাকা অভিমুখে যে অল্প কিছু বাস চলেছে, সেগুলো মানিকগঞ্জ, ধামরাই, গাজীপুরসহ বিভিন্ন স্থানে আটকে দেয় পুলিশ। পাহারারত পুলিশ ও সরকারি দলের লোকজন যাত্রীদের বাস থেকে নেমে যেতে বাধ্য করে। তল্লাশির নামে বিভিন্ন স্থানে ট্রেন থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয়। ঢাকার আশপাশে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, ইজিবাইক ও রিকশা থেকেও যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে।ঢাকা ও ঢাকার বাইরে থেকে অধিকাংশ ট্রেন ছাড়েনি। অল্প যে কটা ট্রেন ঢাকার বাইরে থেকে ছেড়েছে, সেগুলোও পথে পথে আটকে রাখা হয়। লঞ্চ ছিল পুরোপুরি বন্ধ। কুয়াশার অজুহাতে ফেরিও চলেনি পুরোদমে।সব মিলিয়ে কাল দুর্ভোগের চরম রূপ দেখেছে দেশের মানুষ। কোনো ঘোষণা ছাড়াই সরকারের পুরো প্রশাসন, সরকারি দল ও সমর্থক সংগঠনগুলো যেভাবে অবরোধের মতো পরিস্থিতি সৃষ্টি করেছে, তাতে মানুষের অসহায়ত্ব প্রকাশ করা ছাড়া আর কিছুই করার ছিল না।দূরপাল্লার মতো গতকাল রাজধানী শহরের ভেতরেও বাস চলেনি। বাসের অভাবে দিনভর কর্মব্যস্ত ঢাকাবাসী রিকশা, পায়ে হেঁটে, রিকশাভ্যানে চলেছেন। কাউকে কাউকে মালবাহী পিকআপ ভ্যানে চড়ে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।কল্যাণপুর, ফার্মগেট, মিরপুর, সায়েদাবাদসহ রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় সরকার-সমর্থকদের লাঠির মধ্যে জাতীয় পতাকা বেঁধে মিছিল করে সড়কে অবস্থান নিতে দেখা গেছে। এ সময় হাজার হাজার মানুষকে যানবাহনের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।কল্যাণপুর বাসস্ট্যান্ডে স্কুলশিক্ষক মার্জিয়া বেগম ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘এ এক অদ্ভুত দেশ! বড় লোকের গাড়ি চলছে কিন্তু সাধারণ মানুষের বাস চলতে পারবে না। এ কেমন রাজনীতির শিকার আমরা! আসলে দেশটা স্কুলের বাচ্চাদের যেমন খুশি তেমন সাজো খেলার মতো হয়ে গেছে।’রাজধানীতে চলাচলকারী অন্তত ১০টি পরিবহনের মালিকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, শুক্রবার রাতেই পুলিশ ও সরকার-সমর্থক পরিবহন নেতারা তাঁদের বলে দিয়েছেন, শনিবার থেকে কোনো বাস যেন রাস্তায় না নামে। পুলিশের পক্ষ থেকে প্রচার করা হয়েছে নির্বাচনের দায়িত্ব পালনের জন্য অন্তত ৫০০ বাস রিকুইজিশন করা হবে। রাস্তায় পেলেই এগুলো রিকুইজিশন করা হবে।রেলপথ: আজ বিকেলের আগে ঢাকায় যাতে কোনো ট্রেন না আসে, সেই নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে রেলের কর্মকর্তাদের। এর মধ্যে কিছু ট্রেন বিভিন্ন গন্তব্য থেকে ছাড়া হলেও সেগুলো পথে পথে দাঁড় করিয়ে রাখা হবে। ট্রেনের টিকিট বিক্রিও বন্ধ রয়েছে। অগ্রিম যারা টিকিট কেটেছিল, সেগুলো ফেরত নেওয়া হয়েছে।প্রতিদিন গড়ে ১২২টি ট্রেন ঢাকায় আসা-যাওয়া করে। গত শুক্রবার রাত ১২টা থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত মাত্র ছয়টি ট্রেন ঢাকায় প্রবেশ করে এবং সাতটি ট্রেন ছেড়ে যায়।ঢাকা-নারায়ণগঞ্জ পথে দৈনিক ১৬ জোড়া ট্রেন আসা-যাওয়া করে। গতকাল ভোরে একটি ট্রেন নারায়ণগঞ্জ গিয়ে আবার সকালেই ফিরে আসে। আর সারা দিন কোনো ট্রেন চলেনি ওই পথে। গত শুক্রবার রাতে চট্টগ্রাম থেকে তূর্ণা নিশীথা ও চট্টগ্রাম মেইল ছেড়ে আসে। সন্ধ্যা পর্যন্ত এগুলো ঢাকায় পৌঁছায়নি। গতকাল সারা দিন একমাত্র সুবর্ণ এক্সপ্রেস চট্টগ্রাম থেকে ছাড়ে। রাজশাহী ও সিলেট থেকে কোনো ট্রেনই ছাড়েনি।জামালপুর থেকে আসা আন্তনগর যমুনা এক্সপ্রেস ও ব্রহ্মপুত্র ট্রেন দুটি দিনভর ময়মনসিংহ স্টেশনে আটকে রাখা হয়। কিশোরগঞ্জ-ঢাকা পথের আন্তনগর এগারসিন্ধুর এক্সপ্রেস ও কিশোরগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি ভৈরব বাজার থেকে ফিরে যায়। লালমনিরহাট এক্সপ্রেস ট্রেন শুক্রবার ও শনিবার ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে আসেনি।সড়কপথ: কাল সকাল থেকেই গাবতলী টার্মিনালের প্রবেশমুখ দখল করে সরকারি দলের শ্রমিক সংগঠনের নেতা-কর্মীরা গানের আসর বসান। সেখানে দিনভর চলে বাউল গান। সড়কে গানের আসর বসিয়ে যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করতে দেখা যায় ফুলবাড়িয়া টার্মিনালেও। মহাখালী ও সায়েদাবাদ টার্মিনালে গানের আসর না থাকলেও সরকার-সমর্থক পরিবহন নেতাদের লাঠি হাতে পাহারা দিতে দেখা যায়। সায়েদাবাদ টার্মিনালের প্রায় সব বাস কাউন্টার বন্ধ রয়েছে। একটি কাউন্টার খোলা পেয়ে ব্যবস্থাপক মামুন মিয়াকে জিজ্ঞেস করলে তিনি বলেন, ‘মালিক কইছে খুইল্যা রাখতে, যদি সন্ধ্যার পরে বাস ছাড়ে তাইলে টিকিট বেচতে কইছে।’মহাখালী বাস টার্মিনালের প্রবেশমুখে ময়মনসিংহের ভালুকার আবদুল মজিদ বলেন, ১১ দিন বঙ্গবন্ধু মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে চিকিৎসা শেষে বাড়ি যাওয়ার জন্য টার্মিনালে এসেছেন। কিন্তু এসে দেখেন বাস চলছে না। ঢাকায় থাকার মতো আত্মীয় নেই তাঁর। সঙ্গে থাকা স্ত্রীকে নিয়ে টার্মিনালেই একটি পাটি বিছিয়ে বসে ছিলেন। মজিদ বলেন, অটোরিকশা ভাড়া করতে চেয়েছিলেন। দুই হাজার টাকা হাঁকার পর আর সাহস হয়নি।নারায়ণগঞ্জের মেঘনা সেতুর টোলপ্লাজা এলাকায় যানবাহন তল্লাশির নামে যাত্রীবাহী বাসে পুলিশের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে।সোনারগাঁয় আসমা পরিবহনের চালক আলমগীর হোসেন অভিযোগ করেন, মিতা হক ও সোহেল রানা নামের দুই যাত্রীর হাতব্যাগ ও মানিব্যাগ ছিনিয়ে নিয়েছে পুলিশ। অটোরিকশা চালক আবদুল হক জানান, পুলিশ তাঁর দুই যাত্রীকে বিএনপির কর্মী বলে মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখিয়ে আড়াই হাজার টাকা আদায় করে।এ ব্যাপারে সোনারগাঁ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আতিকুর রহমান খান বলেন, চাঁদাবাজির অভিযোগ তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।টঙ্গীতে পুলিশ হাত মাইকে বাস না চালাতে ও একসঙ্গে পাঁচজনের বেশি না চলতে নির্দেশ দেয়। টঙ্গী-কালীগঞ্জ পথের চলনবিল পরিবহনের বাসের চালক মাসুম বলেন, তিনি তিনবার বাসে যাত্রী নিয়ে ঢাকায় প্রবেশের চেষ্টা করেছেন। কিন্তু প্রতিবারই টঙ্গীতে আটকে দেওয়া হয়েছে। চাঁপাইনবাবগঞ্জ থেকে ছেড়ে আসা একটি বাস ৩০ জন যাত্রীসহ রাজশাহীর বোয়ালিয়া থানায় নিয়ে যায় পুলিশ।ভারত থেকে বেনাপোল হয়ে চট্টগ্রামের উদ্দেশে ছেড়ে আসা একটি বাসের ৩৫ জন যাত্রী আটকা পড়েন। এঁদেরই একজন প্রণব দাস বিকেল সাড়ে চারটার দিকে বলেন, তাঁদের বাসটি ধামরাইয়ে আটকে দেওয়া হয়েছে। পরিবারের সদস্যদের নিয়ে এখন অসহায় অবস্থা। তিনি জানান, তাঁদের বাসের আগে-পিছে আরও কয়েক শ গাড়ি আটকে আছে। নৌপথ: বরিশাল, পটুয়াখালী, পিরোজপুর, ভোলা, ঝালকাঠিসহ দেশের দক্ষিণাঞ্চল থেকে লঞ্চ চলাচল বন্ধ ছিল। প্রশাসন ও সরকারি দলের লোকজনের চোখ ফাঁকি দিয়ে ছোট ছোট ঘাট থেকে কয়েকটি লঞ্চ ছেড়ে ঢাকায় পৌঁছালে পুলিশ যাত্রীদের তল্লাশি করে এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তারও করে। ভোলার প্রায় ২১ লাখ মানুষের প্রধান যাতায়াত লঞ্চে। শুক্রবার রাত থেকে জেলা থেকে চলাচলকারী ২০ পথে কোনো লঞ্চ, সি-ট্রাক ও ট্রলার চলেনি। শুক্রবার রাতে বরিশাল নৌবন্দর থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ার সময় চারটি লঞ্চ আটকে প্রায় ১০ হাজার যাত্রী নামিয়ে দেয় পুলিশ। শিশু, নারী, বৃদ্ধ, অসুস্থ রোগীসহ অসংখ্য মানুষ শীতের রাতে দুর্ভোগে পড়েন।লঞ্চ থেকে নামিয়ে দেওয়ার অভিযোগ করে রোকসানা বেগম বলেন, ‘আমাদের সঙ্গে তামাশা করা হচ্ছে। বাচ্চাদের নিয়ে এখন কোথায় যাব। আমরা আওয়ামী লীগ-বিএনপি চিনি না। দুর্ভোগ বুঝতে পারি।’জানতে চাইলে বরিশালে নৌ-নিরাপত্তা ও ট্রাফিক বিভাগের উপপরিচালক আবুল বাসার মজুমদার বলেন, পুলিশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। বরিশাল মহানগর পুলিশের উপকমিশনার (দক্ষিণ) টি এ মোজাহিদুল ইসলাম বলেন, নিরাপত্তার কারণেই লঞ্চ ছেড়ে যায়নি। রাজধানীতে অন্তহীন দুর্ভোগ: শুক্রবার সকালে মাকে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে ভর্তি করে ধামরাইয়ের গ্রামের বাড়িতে গিয়েছিলেন নাসিমা আক্তার। শনিবার সকালে তিনি ফেরেন অনেক প্রতিকূলতার মধ্যে। কাল দুপুরে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালের সামনে নাজমা বলেন, বাড়ি থেকে মায়ের জন্য কিছু রান্না করে নিয়ে এসেছিলেন। ধামরাই থেকে লোকাল বাসে উঠে সাভার আসার পর সরকারি দলের সমর্থকেরা তাঁকে বাস থেকে নামিয়ে দেয়। এরপর ইজিবাইকে হেমায়েতপুর আসার পর সেখানে পুলিশ আটকে দেয়। এরপর ইঞ্জিনচালিত রিকশায় গাবতলী আসার পথে আমিনবাজারে আরেকবার পুলিশের বাধা। সব শেষে গাবতলী টার্মিনালে বাধা পেরিয়ে সোহরাওয়ার্দী হাসপাতালে আসতে তাঁর সময় লেগেছে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা। টাকা খরচ হয়েছে ৩০০।(প্রতিবেদন তৈরিতে তথ্য দিয়ে সহায়তা করেছেন সংশ্লিষ্ট এলাকার প্রতিনিধিরা)
ফ্যাশন জগতের নেতৃত্বস্থানীয় ব্যক্তিদের প্রতি সারা বিশ্বের পোশাকশ্রমিকদের পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস।নিউইয়র্কে বিভিন্ন দেশের ফার্স্ট লেডি ও বিশিষ্ট নারীদের সম্মানে জাতিসংঘ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান বক্তার বক্তব্যে ড. ইউনূস এ কথা বলেন। গতকাল শুক্রবার ইউনূস সেন্টারের বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, ড. ইউনূস তাঁর বক্তব্যে পোশাকশ্রমিকদের জীবনমান উন্নয়নে তাঁর আন্তর্জাতিক ন্যূনতম মজুরির প্রস্তাব তুলে ধরেন।অনুষ্ঠানে নারীদের কল্যাণে কাজ করার স্বীকৃতিস্বরূপ সম্মাননা জানানো হয়দ্য ডেইলি বিস্ট পত্রিকার সম্পাদক টিনা ব্রাউনের হাতে পুরস্কার তুলে দেন ড. ইউনূস। বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ফ্যাশন ফর ডেভেলপমেন্ট এ সম্মাননা জানায়।অনুষ্ঠানে ফ্যাশন ম্যাগাজিন ভোগ-এর প্রধান সম্পাদক আনা উইনটুরও বক্তব্য দেন। তিনি দরিদ্র নারীদের জীবনমান উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় ড. ইউনূসের প্রশংসা করেন।কোনো আলোচনা ছাড়াই গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশের (আরপিও) একটি গুরুত্বপূর্ণ ধারা বাদ দেওয়া হলো। এর ফলে সরকারি চাকুরে ছাড়া যে কেউ যেকোনো রাজনৈতিক দলে যোগ দিয়েই জাতীয় নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার সুযোগ পেলেন।আরপিও সংশোধন করে এ-সংক্রান্ত একটি বিল গতকাল সোমবার সংসদে পাস হয়েছে। বিলটি পাস হওয়ায় মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে দণ্ডিত ব্যক্তিরা সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য হলেন।আরপিওর ১২/জে ধারায় উল্লেখ ছিল, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার দিন থেকে পূর্ববর্তী তিন বছরে নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলে নিরবচ্ছিন্ন সদস্যপদ না থাকলে কোনো ব্যক্তি প্রার্থী হওয়ার যোগ্য হবেন না। তবে নতুন নিবন্ধিত দলের প্রার্থীদের জন্য এই বিধান প্রযোজ্য নয়। ২০০৮ সালে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় রাজনৈতিক দলগুলোর সম্মতি নিয়েই এই বিধান করা হয়েছিল।এখন এই ধারা হঠাৎ বাদ দেওয়া হলো কেন, তার কোনো ব্যাখ্যা সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া হয়নি। বিরোধী দল বিএনপি বিলটি পাসের আগে জনমত যাচাইয়ের নোটিশ দিয়েই দায়িত্ব সেরেছে। সংসদে না যাওয়ায় তাদের নোটিশ উত্থাপনই হয়নি। আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বিলটি উত্থাপন করলে কোনো বাধা ছাড়াই তা কণ্ঠভোটে পাস হয়।আরপিও সংশোধন বিলটি সংসদে উত্থাপিত হয় গত ৩০ সেপ্টেম্বর। এরপর বিলটি পরীক্ষা করে প্রতিবেদন দেওয়ার জন্য আইন মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটিতে পাঠানো হয়। ২৭ অক্টোবর কমিটি বিলটি পাসের সুপারিশ করে প্রতিবেদন উত্থাপন করে।সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা আকবর আলি খান প্রথম আলোকে বলেন, ‘বিষয়টি দুর্ভাগ্যজনক। এর অর্থ, আমরা জাতি হিসেবে পেছনের দিকে যাচ্ছি। এর ফলে কালো-টাকার মালিকেরা মনোনয়নপত্র কিনে নেবেন। আর যাঁরা দীর্ঘদিন থেকে নিবেদিতভাবে দলের জন্য কাজ করছেন, তাঁরা বঞ্চিত হবেন।’ তিনি মনে করেন, ধারাটি বাদ দেওয়ার আগে সব দলের মতামত এবং সংসদের মাধ্যমে জনমত যাচাই করা উচিত ছিল।সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)-এর সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদারের মতে, এর ফলে আগামী নির্বাচনে কালোটাকার বিস্তার ঘটবে এবং সংসদ ব্যবসায়ীদের আখড়ায় পরিণত হবে। এর মাশুল রাজনৈতিক দলগুলোকেই দিতে হবে।এ ছাড়া আরপিওর ১৩ ধারা সংশোধন করে প্রার্থীর জামানতের অঙ্ক ১০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ২০ হাজার টাকা করা হয়েছে। ১৬ ধারা সংশোধন করে বলা হয়েছে, কোনো একটি আসনে একটি দল থেকে একাধিক প্রার্থীকে মনোনয়ন দেওয়া হলে মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের দিনের মধ্যে দলকে লিখিতভাবে একজন প্রার্থীর নাম চূড়ান্ত করতে হবে। এ ক্ষেত্রে প্যানেলের অন্য প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র বাতিল বলে গণ্য হবে।প্রার্থীর নির্বাচনী ব্যয় ১৫ লাখ টাকার পরিবর্তে ২৫ লাখ টাকা করা হয়েছে। ৪৪/সিসিসি ধারা সংশোধন করে বলা হয়েছে, দেশের বিভিন্ন এলাকায় নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়ে দলীয় প্রধানের যে ব্যয় হবে, তা নির্বাচনী ব্যয় হিসেবে বিবেচিত হবে না। ৯০/এফ ধারা সংশোধন করে বলা হয়েছে, নির্বাচনে রাজনৈতিক দলের তহবিলে একজন ব্যক্তি অনুদান হিসেবে সর্বোচ্চ ১০ লাখ টাকা এবং প্রতিষ্ঠান ২৫ লাখ টাকা দিতে পারবে।গতকাল দুর্নীতি দমন কমিশন (সংশোধন) বিল ২০১৩ পাসের জন্য দিনের কার্যতালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হলেও শেষ পর্যন্ত সংসদ কাজে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী মতিয়া চৌধুরীর অনুরোধে তা প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়।সংসদের অধিবেশন ৪ নভেম্বর বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত মুলতবি করা হয়।ইংল্যান্ডের পক্ষে ২৭টি টেস্ট খেলেছেন। ১৯৫০-৫১ অ্যাশেজের মেলবোর্ন টেস্টে অপরাজিত ১৫৬ রান হয়ে আছে যে ক্যারিয়ারের সবচেয়ে উজ্জ্বল অধ্যায়। প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলেছেন ৪৯৫টি, রান ৩০,৫৪৬। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন পাইলট হিসেবে। রেগ সিম্পসনের মৃত্যুটা এত বড় খবর হয়ে ওঠার কারণ অবশ্য এগুলো নয়। ২০১০ সালে অ্যালেক বেডসারের মৃত্যুর পর থেকে তিনি হয়ে ছিলেন সবচেয়ে বেশি বয়সী ইংল্যান্ডের টেস্ট খেলোয়াড়। ৯৩ বছর ২৭০ দিন বয়সে মারা গেছেন গত রোববার। তবে তাঁর সাবেক কাউন্টি নটিংহ্যামশায়ার মৃত্যুর খবরটা ঘোষণা করেছে গতকাল। এএফপি।১২তম জাতীয় দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী দাবার পুরুষ ও মহিলা বিভাগে চ্যাম্পিয়ন  দাবাড়ু দম্পতি আজগর আলী ও জামিলা আক্তার। কাল দাবা ফেডারেশন কার্যালয়ে মীর হোসেনকে হারিয়ে ষষ্ঠবারের মতো শিরোপা জেতেন আজগর। ৯ খেলায় ৮ পয়েন্ট সিলেটের দাবাড়ুর। সমান পয়েন্ট পেয়েও টাইব্রেকারে রানারআপ শামসুল ইসলাম।প্রতিযোগিতায় এটিই জামিলার প্রথম শিরোপা। গতবার হয়ের্িছলেন রানারআপ। ৯ খেলায় ৫ পয়েন্ট জামিলার। ৪ পয়েন্ট নিয়ে রানারআপ আসিয়া আক্তার।
বর্তমান শিক্ষাব্যবস্থা পরীক্ষামুখী, ফলাফলনির্ভর ও মুখস্থবিদ্যায় পরিণত হয়েছে। এ থেকে বেরিয়ে আসতে হলে শিক্ষায় সমাজের সম্পৃক্ততা বৃদ্ধি করতে হবে।গতকাল শুক্রবার সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বিদ্যাসাগর-রোকেয়া ট্রাস্ট’ আয়োজিত পরামর্শ সভায় এ কথা বলা হয়। ট্রাস্ট ফলাফল ও পরীক্ষানির্ভর মুখস্থবিদ্যার পরিবর্তে শিক্ষায় গুণগত পরিবর্তনে সামাজিক সম্পৃক্ততার ডাক দিয়ে পথচলা শুরু করেছে। এর স্লোগান ‘লক্ষ লোকের শিক্ষাযাত্রা’।ট্রাস্টের সভাপতি ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান বলেন, শিক্ষক, ছাত্র ও অভিভাবকদের মনকে আরও বড় কিছু ভাবার সুযোগ করে দিতেই এই ট্রাস্ট করা হয়েছে।ট্রাস্টের সম্পাদক ও সাংবাদিক আবুল মোমেন জানান, শিক্ষানুরাগী ও মুক্তচিন্তার মানুষের অনুদানে ১০ কোটি টাকার প্রাথমিক তহবিল নিয়ে ট্রাস্ট গঠনের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। জনপ্রতি এক হাজার টাকা করে অনুদান দিলে এক লাখ লোক শিক্ষাযাত্রার সঙ্গী হতে পারবেন। এই ১০ কোটি টাকা ব্যাংকে গচ্ছিত রেখে এর লভ্যাংশের ৮০ শতাংশ ট্রাস্টের কাজে ব্যবহার করা হবে। তিনি জানান, ট্রাস্টিদের মধ্যে আছেন কথাসাহিত্যিক সেলিনা হোসেন, জাদুশিল্পী জুয়েল আইচ, প্রত্নতত্ত্ববিদ শামসুল হোসাইন, ফুলকির প্রতিষ্ঠাতা শীলা মোমেন ও আইনজীবী হরিসাধন দেবব্রহ্মণ।বাংলাদেশের রাজনৈতিক সংকটের কারণে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে চীন।ঢাকায় নিযুক্ত চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুন গতকাল সোমবার এক বিবৃতিতে এ উদ্বেগের কথা জানান। একই সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে বিরোধীদলীয় নেত্রীর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ফোনালাপকে স্বাগত জানিয়েছেন।বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে দেওয়া এ বিবৃতি ঢাকার চীনা দূতাবাস থেকে গত রাতে গণমাধ্যমে পাঠানো হয়।বিবৃতিতে চীনের রাষ্ট্রদূত লি জুন বলেন, ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক অচলাবস্থাকে কেন্দ্র করে সহিংসতা বেড়ে যাওয়ার ঘটনায় আমরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এমন একটি পরিস্থিতিতে চলমান রাজনৈতিক অচলাবস্থা কাটাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার টেলিফোন করাসহ সাম্প্রতিক ইতিবাচক অগ্রগতিকে স্বাগত জানাই।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের বন্ধু হিসেবে চীন প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোকে এ ধরনের ইতিবাচক অগ্রগতি অব্যাহত রাখার জন্য সব ধরনের চেষ্টা চালাতে প্রেরণা জোগাবে। পাশাপাশি জনগণের দীর্ঘমেয়াদি কল্যাণের লক্ষ্যে দলগুলোকে সংঘাতের পরিবর্তে রাজনৈতিক প্রজ্ঞা ব্যবহারের মাধ্যমে নিকট ভবিষ্যতে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠান আয়োজনের সর্বসম্মত উপায় খুঁজে নিতে উৎসাহ জুগিয়ে যাবে।এদিকে চলমান রাজনৈতিক সংকটকে কেন্দ্র করে গতকাল ঢাকায় কূটনীতিকদের কয়েকটি বৈঠক হয়েছে। এর মধ্যে সকালে ঢাকায় নিযুক্ত মার্কিন রাষ্ট্রদূত ড্যান মজীনা জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে তাঁর বাসায় বৈঠক করেন।বিকেলে ড্যান মজীনার বাসায় যান ঢাকায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সরন। ড্যান মজীনা গত শনিবার দিল্লি থেকে ফেরেন। তিনি ২৩ অক্টোবর তিন দিনের সফরে দিল্লি যান। যাওয়ার আগের দিনও তিনি ঢাকায় ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। মজীনা তাঁর দিল্লি সফরে বাংলাদেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়ে ভারতের পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংসহ সে দেশের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করেন বলে জানা গেছে।এ ছাড়া গতকাল বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সরনের সঙ্গে তাঁর বাসায় বৈঠক করেন বলে জানা গেছে।প্রায় এ রকম মানসিক অবস্থার মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল তাঁকেও। জোনাথন ট্রটের মতো এত খারাপ অবস্থা হয়নি, কিন্তু আন্তর্জাতিক ক্রিকেটের চাপ যে কত ভয়ংকর, সেটা মিচেল জনসন ভালোই জানেন। চাপ সইতে না পেরে ট্রটের দেশে ফিরে যাওয়া যেন জনসনকে অনেক দিন পর সেই স্মৃতিটাই ফিরিয়ে দিল। কিছুটা হলেও তিনি অনুমান করতে পারছেন ট্রটের মানসিক অবস্থা। প্রতিপক্ষ হয়েও ইংলিশ ব্যাটসম্যানের জন্য তাই সহমর্মিতা জানালেন অস্ট্রেলিয়ান পেসার।মানসিক অবসাদে আক্রান্ত হয়ে দেশে ফিরে গেছেন ট্রট। আনুষ্ঠানিকভাবে ইংল্যান্ড দলের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে ‘চাপজনিত অসুস্থতা’। ব্রিসবেন টেস্টে জনসনের বাউন্সারে ট্রটকে নাস্তানাবুদ হতে দেখে তাঁকে ‘ফাস্ট বোলিংয়ের বিপক্ষে ভীত’ মন্তব্য করে ঝড় তুলেছিলেন ডেভিড ওয়ার্নার। ট্রটের অমন অবস্থার কারণ তো জানা গেল পরে। সেটি জানার পর তাঁর প্রতি সহমর্মিতা জানানোর পাশাপাশি নিজেরও প্রায় একই রকম অভিজ্ঞতার স্মৃতিচারণা করেছেন জনসন। বছর দুয়েক আগে শ্রীলঙ্কা ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে পরপর দুটি সিরিজে খারাপ করার (৫ টেস্টে ৯ উইকেট) ওই সময়টায় এমনকি ক্রিকেট ছেড়ে দেওয়ার কথাও ভাবছিলেন জনসন! ভাগ্যিস, ওই সময়ই পায়ের আঙুলে চোট পেয়ে মাস ছয়েকের জন্য ছিটকে যেতে হয় তাঁকে। সময়টা মিচেল জনসন কাজে লাগিয়েছিলেন মানসিক পুনর্বাসনে। চাপ সইতে না পেরে দেশে ফিরে যাওয়া ট্রটকে তাই সমবেদনা জানিয়েছেন জনসন, ‘আমি খবরটা শুনেই একটা ধাক্কা খেয়েছি। কখনো কখনো খুব কঠিন সময় আসে মানুষের জীবনে। একটা নির্দিষ্ট ব্যাপার নিয়ে ভাবনার বদলে আমরা ছোটখাটো অনেক বিষয় নিয়ে ভাবনা শুরু করি। মনে হচ্ছে এই মুহূর্তে সে-ও ওইভাবেই ভাবছে। ওর কিছুদিন খেলা থেকে দূরে থাকা দরকার।’ বিরতিটা কাজে লাগিয়ে ট্রটকে আবারও আগের রূপে মাঠে ফেরার শুভকামনাও জানালেন ব্রিসবেনে দুই ইনিংসেই তাঁর উইকেট নেওয়া জনসন, ‘আমি চোটের সময়টা কাজে লাগিয়ে মানসিকভাবে ফুরফুরে হয়ে আবারও ফিরেছিলাম। ট্রটের জন্য শুভকামনা রইল। আশা করছি, হয়তো এই সিরিজের শেষ দিকে কিংবা অন্য কোনো সিরিজে সে ফিরে আসবে। ও ইংল্যান্ডের জন্য দারুণ এক ক্রিকেটার এবং এত দিন অসাধারণ খেলেছে।’স্লেজিং নিয়ে তপ্ত হয়ে ওঠা অ্যাশেজে প্রতিপক্ষের জন্য জনসনের সহমর্মিতা কিছুটা হলেও স্বস্তির বাতাস ছড়িয়ে দেবে। তবে সেটা মাঠের বাইরে। মাঠে প্রতিপক্ষকে একবিন্দু ছাড় দিতে রাজি নন জনসন, ‘ওর (ট্রটের) জন্য আমাদের সহমর্মিতা আছে, কিন্তু মাঠে আমরা কঠিন ক্রিকেটই খেলব।’ এএফপি।বিশ্ব যুব দাবার অনূর্ধ্ব-১০ বিভাগের দশম রাউন্ডে জয় পেয়েছে ফাহাদ রহমান। সংযুক্ত আরব আমিরাতের আল আইনে ফাহাদ হারিয়েছে জার্মানির দাবাড়ু দবরিকভ মার্কোকে। এই জয়ে সাড়ে ৭ পয়েন্ট নিয়ে দশম স্থানে ফাহাদ।
জাতিসংঘে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন বিকল্পধারার সভাপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। তিনি বলেন, জাতিসংঘে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী অস্ত্র না কেনার উপদেশ দিলেন। কিন্তু তিনি নিজে কত হাজার কোটি টাকার অস্ত্র কিনেছেন, সে হিসাব দিতে পারবেন না।গতকাল শুক্রবার বিকেলে বিকল্পধারার কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক যোগদান অনুষ্ঠানে বি. চৌধুরী এ কথা বলেন।বি. চৌধুরী প্রধানমন্ত্রীর কাছে প্রশ্ন করেন, ‘পাঁচ বছরে কত হাজার কোটি টাকার অস্ত্র কিনেছেন, তার হিসাব কি দিতে পারবেন?’ এসব অস্ত্র দেশের মানুষের বিরুদ্ধে ব্যবহার করা হয়েছে। পাঁচ বছরে শত শত মানুষকে হত্যা ও গুম করা হয়েছে।অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিমের বক্তব্যের কড়া সমালোচনা করেন বি. চৌধুরী। নাসিমের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীরা কারও বাবার চাকর নয়, তারা প্রজাতন্ত্রের কর্মচারী। তাদের অপমান করার অধিকার কারও নেই।’ আর অর্থমন্ত্রীর উদ্দেশে সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘নিজের ছাত্রদের বদমাশ বলতে আপনার লজ্জা হয় না। এ কথা বলার পর আপনার পদত্যাগ করা উচিত ছিল।’বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিনে গতকাল সোমবারও দেশের বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা  হয়েছে। হরতাল-সমর্থক, হরতালবিরোধী ও পুলিশের মধ্যে সংঘর্ষে চার জেলায় চারজন নিহত হয়েছেন। বিভিন্ন স্থানে সংঘর্ষে আহত হয়েছেন কমপক্ষে দেড় শ ব্যক্তি। এ নিয়ে দুই দিনের হরতালে নয়জন নিহত হলেন।দ্বিতীয় দিনে জামালপুরের ইসলামপুরে যুবলীগের কর্মী, চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় ট্রাকচালক, কিশোরগঞ্জের কুলিয়ারচরে যুবদলের নেতা ও চাঁদপুরে ছাত্রদলের কর্মী নিহত হন। রেললাইনে নাশকতায় লাইনচ্যুত হয়েছে যাত্রীবাহী ট্রেন, হামলা হয়েছে লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স, সাংবাদিক ও সংবাদপত্রের গাড়িতে। রাজধানী ঢাকার শতাধিক স্থানসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে অসংখ্য ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। বেশ কিছু যানবাহনে অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। ঢাকায় ২০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। গত রোববার থেকে শুরু হওয়া এ হরতাল আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ছয়টায় শেষ হচ্ছে।আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলা সদরের রামভদ্রা বাজারে গতকাল সকালে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে বিএনপি। আওয়ামী লীগও পাল্টা মিছিল বের করলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষে হরতাল-সমর্থকদের বল্লমের আঘাতে যুবলীগের কর্মী শাহাজাদা সরকার (৩৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হন। তিনি রামভদ্রা গ্রামের জবেদ আলী সরকারের ছেলে। সংঘর্ষে উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।ইসলামপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কাজী সাইদুর রহমান জানান, যুবলীগের কর্মী শাহাজাদার লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জামালপুর জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।চট্টগ্রাম-কক্সবাজার মহাসড়কের সাতকানিয়ার হাসমতের দোকান এলাকায় রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে একটি ট্রাক লক্ষ্য করে ইট ছুড়ে মারে হরতাল-সমর্থকেরা। এতে ট্রাকটির চালক মোহাম্মদ ওয়াসিম (৩৫) চোখ ও মাথায় আঘাত পেয়ে অজ্ঞান হয়ে পড়লে ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সড়কের ওপর উল্টে যায়। ঘটনাস্থলেই ওয়াসিম মারা যান। গুরুতর আহত হন চালকের দুই সহকারী মোহাম্মদ আলম (২৪) ও মোহাম্মদ হোসেন (৩২)। ওয়াসিমের বাড়ি চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জ উপজেলার শাহজী বাড়িতে। তিন ভাইবোনের মধ্যে তিনি ছিলেন সবার বড়।সাতকানিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) মো. হারুন-অর-রশিদ চৌধুরী জানান, এ ঘটনায় ওয়াসিমের ছোট ভাই মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন।ঢাকা-কিশোরগঞ্জ সড়কের কুলিয়ারচরের আগরপুর বাসস্ট্যান্ডে সকালে টায়ার জ্বালিয়ে ও গাছ ফেলে অবরোধ সৃষ্টি করে হরতাল-সমর্থকেরা। পুলিশ তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করে। পুলিশের ছোড়া কাঁদানে গ্যাসের একটি শেল উপজেলা যুবদলের সদস্য নেতা হাসেন আলীর গায়ে লাগে। গুরুতর অবস্থায় তাঁকে বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে বিকেলে তিনি মারা যান।অবশ্য কুলিয়ারচর থানার ওসি সুব্রত কুমার সাহা দাবি করেন, হাসেন হূদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা গেছেন।এদিকে বাজিতপুরে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষে তিন পুলিশ সদস্যসহ উভয় পক্ষের কমপক্ষে ১২০ জন আহত হন। গুলিবিদ্ধ হন অন্তত ২৪ জন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, হরতালের সমর্থনে সকালে বাজিতপুর বাজার এলাকায় মিছিল বের করে বিএনপি। এ সময় সিনেমা হল সড়কে হরতালবিরোধী মিছিল বের করে আওয়ামী লীগ। বিএনপির মিছিল ওই সড়কে এলে উভয় পক্ষ সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে। তারা লাঠিসোঁটা ও আগ্নেয়াস্ত্র নিয়ে প্রতিপক্ষের ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। পরে পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়ে আধা ঘণ্টার চেষ্টায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।গুরুতর আহত ব্যক্তিদের বাজিতপুর জহুরুল ইসলাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।চাঁদপুর শহরের পুরানবাজার লোহারপুল এলাকায় সকালে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করে বিএনপি। আওয়ামী লীগের কর্মীরা তাদের ধাওয়া করলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ বাধে। এতে উভয় পক্ষের ২০ জন আহত হন। পরে পুলিশ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় হরতালকারীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ৩০-৩৫টি ককটেল ফাটায়।দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে পুরানবাজারের ট্রাকঘাট রাস্তায় আবারও দুই পক্ষের সংঘর্ষ হয়। পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। এ সময় পুলিশের ছোড়া রাবার বুলেট ছাত্রদলের কর্মী মো. আরজুর (১৪) গায়ে বিদ্ধ হয়। সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে সে মারা যায়।সদর হাসপাতালের চিকিৎসক সিরাজুল ইসলাম বলেন, রাবার বুলেট বিদ্ধ হয়ে আরজু মারা গেছে। গুরুতর আহত মো. হাকিম আলীকে (২২) ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।এ ঘটনার পর আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত চাঁদপুর পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করেছেন জেলা ম্যাজিস্ট্রেট মো. ইসমাইল হোসেন।জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শেখ ফরিদ আহমেদ নিহত আরজুকে ছাত্রদলের কর্মী দাবি করে জানান, পুলিশের এলোপাতাড়ি গুলিতে আরজু মারা গেছে। তবে পুরানবাজার রিফিউজি কলোনির বাসিন্দা আরজুর মা ফরিদা বেগম বলেন, তাঁর ছেলে কোনো দল করত না। আরজুর বাবা মকবুল ঢালী জানান, আরজু সুতার ফ্যাক্টরিতে কাজ করত।চাঁদপুরের সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার শাহীন সৈকত বলেন, পুলিশ রাবার বুলেট ছুড়েছে, কিন্তু গুলি করেনি। পিকেটিংকালে শহরের বিভিন্ন স্থান থেকে সাতজনকে আটক করা হয়েছে। আরজুর বাবা চাঁদপুর মডেল থানায় অজ্ঞাত ৩০০-৪০০ ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা করেছেন।হাজীগঞ্জে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে আগুন ধরিয়ে দেয় হরতাল-সমর্থকেরা। পরে স্থানীয় ও রেলওয়ের লোকজন আগুন নেভান।রাজধানীর শতাধিক স্থানে ককটেল বিস্ফোরণগতকাল সকাল থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত রাজধানীর শতাধিক স্থানে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। আগুন দেওয়া হয়েছে কয়েকটি যানবাহনেও। হরতালে নাশকতার অভিযোগে পুলিশ ৫৮ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁদের মধ্যে ২০ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। রোববারও রাজধানীতে অসংখ্য ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।গতকাল হরতালের সমর্থনে রাস্তায় বড় মিছিল-সমাবেশ বা অন্য কোনো কর্মসূচি প্রায় ছিলই না। তবে ভোর থেকেই বিভিন্ন জায়গায় ককটেল বিস্ফোরিত হয়। পান্থপথ, মিরপুর, শ্যামলী, বাসাবো, খিলক্ষেত, রমনা, তেজগাঁও, বংশাল, জজকোর্ট এলাকা, এর পাশে জেলা প্রশাসকের এবং জেলা পুলিশ সুপারের কার্যালয়সহ শতাধিক স্থানে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে।রাত পৌনে ১০টার দিকে সুরক্ষিত বিমানবন্দরের কার পার্কিং এলাকায় পরপর তিনটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। রাত পৌনে আটটার দিকে বাংলামোটর মোড়ে মো. জিকরুল (৪০) নামে এক রিকশাচালকের ওপর ককটেল বিস্ফোরিত হলে তিনি আহত হন। রাত সাড়ে আটটার দিকে মালিবাগের ফরচুন মার্কেটের সামনে ককটেল বিস্ফোরণে আহত হন দোকানকর্মী মনোয়ার হোসেন (২৫)।সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতা, সরকারি কর্মকর্তা ও কয়েকজন বিশিষ্ট ব্যক্তির বাসভবনের দেয়ালে, ফটকে বা সামনে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। এর মধ্যে রাত আটটায় সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরীর গুলশানের বাসার সামনে, সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদের বাসার সামনে, দুদকের চেয়ারম্যান বদিউজ্জামানের বাসার দেয়ালে এবং সাংবাদিক আবেদ খানের বাসার কাছে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।বিএনপির ঢাকা মহানগরের সদস্যসচিব আবদুস সালামের শান্তিনগরের বাসায় রাত সাড়ে নয়টার দিকে হামলা ও গুলি বর্ষণ করা হয়। পুলিশ জানায়, চারটি মোটরসাইকেলে আসা কালো কাপড়ে মুখ বাঁধা ব্যক্তিরা গুলি করে পালিয়ে যায়। বিএনপি নেতা মির্জা আব্বাসের শাহজাহানপুরের বাসায় এবং রাতে ফার্মগেটে পুলিশ বক্সেও ককটেল হামলার খবর পাওয়া গেছে।রাজধানীর বেশির ভাগ এলাকাতেই আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সঙ্গে সরকারদলীয় নেতা-কর্মীরা রাস্তায় ছিলেন। কয়েকটি এলাকায় বিএনপি-সমর্থিত ১৮ দলের নেতা-কর্মীরা মিছিল করার চেষ্টা করলেও তাঁদের সম্মিলিত বাধায় পারেননি।পুলিশের মিরপুর বিভাগের উপকমিশনার ইমতিয়াজ আহমেদ জানান, চারজনকে বোমাসহ গ্রেপ্তার করা হয়েছে।জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিবেদক জানান, লক্ষ্মীবাজারে সন্ধ্যা ছয়টার দিকে হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ মিছিল করে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রশিবির। মিছিল বাহাদুরশাহ পার্ক এলাকায় যাওয়ার সময় পুলিশ তাদের উদ্দেশে গুলি করে। পরে শিবিরের কর্মীরা ১০টি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পালিয়ে যান।বিকেল সাড়ে তিনটার দিকে জজকোর্ট এলাকায় ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় হরতাল-সমর্থকেরা। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রায়সাহেব বাজার এলাকায় ককটেল বিস্ফোরণে আবদুর রহমান নামের এক রংমিস্ত্রির বাঁ চোখ নষ্ট হয়ে গেছে। জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে তিনি চিকিৎসাধীন। একই সময়ে ওয়ারীতে দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয়। এতে দুই পথচারী আহত হন।সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টার দিকে শাহবাগে মিনিবাসে ও নয়াপল্টনে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। সকাল সাড়ে ছয়টার দিকে মিরপুরের কালশী রোডের ২২ তলা ভবনের সামনে হরতাল-সমর্থকেরা চারটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় ও একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন দেয়। স্থানীয় লোকজন তা নিভিয়ে ফেলায় তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।রাজধানীর বিভিন্ন জায়গায় হরতালবিরোধী সমাবেশ করেছে আওয়ামী লীগ। ব্যক্তিগত গাড়ি তেমন দেখা যায়নি। কিছু বাস ও অটোরিকশা চলেছে। রিকশা চলেছে প্রচুর। তবে যানবাহনের অভাবে বিভিন্ন কাজে বাইরে বের হওয়া মানুষের ভোগান্তি হয়েছে।দিনভর বিভিন্ন জায়গায় পুলিশের প্রচুর তল্লাশি চৌকি ছিল।জয়পুরহাট সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের উড়ি সেতুর কাছে গতকাল বুধবার ভোরে রেললাইনের ফিশপ্লেট, স্লিপার ও প্যান্ডেল ক্লিপ তুলে ফেলে দুর্বৃত্তরা।সকাল সাতটা ১২ মিনিটে আক্কেলপুর থেকে ছেড়ে আসা সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি সাড়ে সাতটার দিকে ঘটনাস্থলে পৌঁছে। তখন শাহাপুর গ্রামের রেলের কিম্যান (খালাসি) আশরাফুল ইসলাম গ্রামবাসীকে সঙ্গে নিয়ে লাল পতাকা উড়িয়ে ট্রেনটি থামান। ফলে বড় ধরনের দুর্ঘটনার হাত থেকে রক্ষা পায় ট্রেনটি।একই দিন ভোরে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথে চাঁদপুরের শাহরাস্তি উপজেলার মেহের স্টেশনর থেকে এক কিলোমিটার দূরে উপলতা এলাকায় রেললাইন উপড়ে ফেলেন অবরোধকারীরা। ভোর পাঁচটায় চাঁদপুর স্টেশন থেকে চট্টগ্রামের উদ্দেশ্য ছেড়ে আন্ত:নগর মেঘনা এক্সপ্রেস ট্রেনটি ভোর ছয়টায় ওই স্থান অতিক্রম করার কথা ছিল। এর আগেই রেললাইন সংলগ্ন এলাকার কৃষক তাজুল ইসলাম ও আনোয়ার হোসেন ছুটে গিয়ে লাল কাপড় উড়িয়ে ট্রেনটি থামান। ফলে বেঁচে যায় পাঁচ শতাধিক যাত্রীর জীবন।স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ভোরে উড়ি সেতু এলাকায় দুর্বৃত্তরা রেললাইনের একটি স্লিপার, চারটি ফিশপ্লেট, ৩৮টি প্যান্ডেল ক্লিপ, আটটি ফিসবোল্ড খুলে ফেলে। ঘটনাটি রেললাইন-সংলগ্ন এলাকার শাহপুর গ্রামের বাসিন্দা রেলওয়ের খালাসি আশরাফুল ইসলাম জানতে পারেন। সঙ্গে সঙ্গে তিনি গ্রামের নারী-পুরুষ সবাইকে নিয়ে লাইনে দাঁড় করিয়ে এবং লাল পতাকা উত্তোলন করে সীমান্ত এক্সপ্রেস ট্রেনটি থামান।শরীরে উল্কি করাতে ভালোবাসেন নেইমার। সান্তোস থেকে বার্সায় যখন আসেন, তখনো একটা উল্কি করিয়েছিলেন পিঠে। কদিন আগেই বড়দিনের ছুটিতে এসেছেন ব্রাজিলে। দেশে ফিরে নতুন একটা উল্কি করালেন বার্সা ফরোয়ার্ড। এবার অবশ্য পিঠে নয়, ঘাড়ে। নেইমারের ব্যক্তিগত ট্যাটুয়িস্ট আদাও রোসা উল্কির একটা ছবি কদিন আগেই পোস্ট করেছেন টুইটারে। এবার নেইমার লিখিয়েছেন ‘তোদো পাসা’। পর্তুগিজ শব্দ দুটির ইংরেজি করলে অর্থ দাঁড়ায়, ‘এভরিথিং পাসেস’ বা ‘সবই চলে যায়’। এই উল্কিটা নেইমার উৎসর্গ করছেন বোন রাফায়েলাকে। ওয়েবসাইট।১২০ গোল!ক্লাব ও জাতীয় দল মিলিয়ে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ২০১৩ সালে গোল করেছেন ৬৯টি। বলুন তো, রোনালদো রিয়াল মাদ্রিদের না হয়ে বার্সেলোনায় খেললে তাঁর গোল হতো কতটি? ১২০টি! এমনটাই মনে করেন রোনালদোর এজেন্ট হোর্হে মেন্ডেস। আসলে মজা করেই বলা। গোল করায় কয়েক বছর ধরেই মেসির সঙ্গে রোনালদোর অলিখিত দ্বৈরথ চলছে। সেই লড়াইয়ে এবার মেসিকে অনেকটা পেছনে ফেলে বিজয়ী রোনালদো। মেসি এ বছর ৪৫ গোল করেছেন, রোনালদোর চেয়ে ২৪টি কম। বোলা টিভিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে মেন্ডেজ তাই ব্যাপারটা নিয়ে কৌতুক করলেন, ‘মেসির গোলস্কোরিং রেকর্ড? রোনালদো বার্সেলোনায় খেললে মৌসুমে ১২০ গোল করত।’ ওয়েবসাইট।
আজ আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস। দিবসটি উপলক্ষে তথ্য কমিশন দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। দিবসটি উপলক্ষে রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা পৃথক বাণী দিয়েছেন।সরকারের সাফল্য প্রচার করার জন্য এবার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়গুলোকে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর থেকে পাঠানো নির্দেশনামতে ইতিমধ্যে ঢাকার কয়েকটি বিদ্যালয়ে ডিজিটাল ফেস্টুন টানানো হয়েছে।সারা দেশে আগে ৩৭ হাজার সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ছিল। নতুন করে আরও ২৩ হাজার স্কুলকে সরকারীকরণ করায় সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় এখন ৬০ হাজার।নির্দেশনায় বলা হয়েছে, প্রতিটি বিদ্যালয়ে দেয়ালে উন্নয়ন কার্যক্রমের বর্ণনা-সংবলিত অন্তত একটি করে ফেস্টুন বা বিলবোর্ড লাগাতে হবে। এটা করতে হবে বিদ্যালয়ের নিজস্ব টাকায়।তবে প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীন ও সচিব কাজী আখতার হোসেন ওই নির্দেশনার কথা জানেন না বলে প্রথম আলোর কাছে দাবি করেছেন। মন্ত্রী আফছারুল আমীন বলেন, শিশুদের বিদ্যালয়ে আনা, মা সমাবেশসহ কিছু উদ্বুদ্ধকরণ কর্মসূচি আছে। কিন্তু এ রকম উন্নয়ন কর্মকাণ্ড প্রচার এবং সে জন্য শিক্ষকদের খরচ দেওয়ার কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি।প্রধান শিক্ষকদের কাছে পাঠানো ওই নির্দেশনামূলক চিঠির শিরোনামে বলা হয়েছে, বর্তমান সরকারের সাফল্য প্রচারের লক্ষ্যে বিলবোর্ড বা ফেস্টুন তৈরি ও তা প্রচারের জন্য নির্দেশনাবলি।নির্দেশনার ব্যবস্থাপনার অংশে বলা হয়েছে, বিভাগীয় উপপরিচালকেরা জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাকে (ডিপিইও) এবং ডিপিইও থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের (টিইও) বিষয়টি অবহিত করবেন। টিইওরা মূল ব্যক্তি হিসেবে দায়িত্ব পালন করবেন। তিনি নিজে কিংবা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের (এটিইও) মাধ্যমে প্রতিটি স্কুল থেকে টাকা সংগ্রহ করবেন। সব টাকা একসঙ্গে করে এক বা একাধিক প্রিন্টং প্রতিষ্ঠান থেকে নির্ধারিত ডিজাইনে ফেস্টুন-গুলো প্রিন্ট করাবেন এবং তা বিদ্যালয়ে পৌঁছে দেবেন। যেসব থানায় টিইও নেই, সেসব থানায় ডিপিইও বা এডিপিও দায়িত্ব নেবেন এবং যে জেলায় ডিপিএনই নেই, সেই জেলায় উপপরিচালকেরা (ডিডি) দায়িত্ব নেবেন। ফেস্টুনগুলো যেকোনো স্থান থেকে তৈরি করা যাবে উল্লেখ করার পাশাপাশি নির্দেশনায় ছয়টি প্রতিষ্ঠানের ঠিকানা দেওয়া হয়। বলা হয়, এই প্রতিষ্ঠানগুলো নির্দিষ্ট রেটে কাজ করে এবং উপজেলা পর্যায়ে পৌঁছে দিতে পারবে। প্রতিষ্ঠান ছয়টি হলো শ্রাবণ এন্টারপ্রাইজ, মেক ডিজিটাল, ই-২৪ প্রিন্টিং, ব্রিয়াম কমিউনিকেশন, দেবদারু মিডিয়া কমিউনিকেশন, অক্ষর অ্যাড মিডিয়া। চিঠিতে এদের সবার যোগাযোগের নম্বরও দেওয়া হয়েছে। নির্দেশনার সঙ্গে ফেস্টুনের ডিজাইনও দিয়ে দেওয়া হয়।ই-২৪ প্রিন্টিংয়ের মফিজুল ইসলাম, অক্ষর অ্যাডের মো. নাসিম, মেক ডিজিটালের মো. রাসেল প্রথম আলোকে জানান, মন্ত্রণালয়ের কর্মকর্তারা এসে তাঁদের সঙ্গে দরদাম ঠিক করে গেছেন। ৪৩৫ থেকে ৪৫০ টাকায় একেকটি ফেস্টুন তাঁরা তৈরি করে দেবেন বলে সিদ্ধান্ত হয়। মফিজুল জানিয়েছেন, তিনি ইতিমধ্যে শরীয়তপুর ও গোপালগঞ্জে ফেস্টুন সরবরাহ করেছেন।সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা জানান, প্রতিটি বিদ্যালয় যদি ৪৫০ টাকা করে খরচ করে, তাতে ৬০ হাজার বিদ্যালয়ের এই খাতে দুই কোটি ৭০ লাখ টাকা খরচ হবে।৩০ অক্টোবরের মধ্যে এ কাজ শেষ করতে বলায় সমাপনী পরীক্ষা সামনে রেখে প্রধান শিক্ষকেরা বিপাকে পড়েছেন। একজন প্রধান শিক্ষক নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, ‘চিঠিতে বলা হয়েছে, কন্টিনজেন্সি ফান্ড বা বিদ্যালয়গুলো নিজস্ব পদ্ধতিতে এই টাকা তুলবে। প্রধান শিক্ষকেরা ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা কন্টিনজেন্সি ফান্ডে পান, যা দিয়ে স্কুলের দৈনন্দিন কাজ করতে হয়।’একাধিক শিক্ষক প্রথম আলোকে বলেন, টিইওরা তাঁদের বলছেন এই টাকা বিদ্যালয়কে দেওয়া কন্টিনজেন্সি ফান্ড থেকে সমন্বয় করতে হবে। কিন্তু দৈনন্দিন কাজকর্মের জন্য কন্টিনজেন্সি ফান্ডের টাকা খরচ হয়ে যায়, সেখানে বছরের শেষ পর্যায়ে প্রচারের জন্য খরচ করার মতো টাকা অনেক বিদ্যালয়েই নেই। এ ছাড়া সরকারের শেষ সময়ে এ কাজ করে তাঁরা রাজনৈতিক রোষানলে পড়তে পারেন বলে আশঙ্কা করছেন।যোগাযোগ করলে নেত্রকোনার পাঁচটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকেরা প্রথম আলোকে জানিয়েছেন, গত বৃহস্পতিবার সদর থানা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা বেগম তাঁদের এই নির্দেশনা এবং এ-সংক্রান্ত চিঠি দেন। পরে তাঁরা খোঁজ নিয়ে জানতে পারেন, জেলার অন্য উপজেলার প্রধান শিক্ষকদেরও এ ধরনের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে।জানতে চাইলে নেত্রকোনা সদর উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহানারা বেগম প্রথম আলোকে বলেন, ‘ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশেই আমরা এটা করেছি’। শিক্ষকেরা কোথা থেকে টাকা পাবেন জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমাদের জানাতে বলেছে। আমরা জানিয়েছি।’জামালপুর জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা আবদুল আলিম বলেন, ‘আমি আমার জেলার সব সরকারি স্কুলে নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছি। কাজটি প্রক্রিয়াধীন আছে।’ঢাকা বিভাগের স্কুলগুলোতে ১৩ অক্টোবর চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। সহকারী পরিচালক মোহাম্মদ আলী রেজা চিঠিতে সই করেছেন। জানতে চাইলে তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’রংপুর বিভাগের উপপরিচালক মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তাদের মাধ্যমে রংপুরের আট জেলার ৫৮টি উপজেলার সব সরকারি স্কুলে আমরা এই নির্দেশনা পৌঁছে দিয়েছি। তবে আমরা এখনো ফলোআপ শুরু করিনি। শিগগিরই করব।’তবে চট্টগ্রাম বিভাগের উপপরিচালক মাহবুবুর রহমান জানিয়েছেন, নির্দেশনার বিষয়ে তিনি পরিষ্কার নন। আর যে ডিজাইন পাঠানো হয়েছে, সেটি তিনি খুলতে পারছেন না। তাই তিনি এখনো কোনো সিদ্ধান্ত নিতে পারেননি।চিঠিতে দেখা যায়, প্রাথমকি শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শ্যামল কান্তি ঘোষকে এই চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে। তবে জানতে চাইলে তিনি এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করতে রাজি হননি।ঝালকাঠির কলেজছাত্র লিমন হোসেনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে তাঁর মায়ের করা মামলা টিকিয়ে রাখতে আদালতে করা রিভিশন আবেদনের ওপর শুনানি আবার পিছিয়েছে। আবেদনটি শুনানির জন্য গতকাল বুধবার জেলা ও দায়রা জজ আদালতের কার্য তালিকায় ছিল।লিমনের মায়ের আইনজীবী মানিক আচার্য্য বলেন, রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি আবদুল মান্নানের করা সময়ের আবেদনের কারণে গতকাল শুনানি হয়নি। জেলা ও দায়রা জজ মো. শহীদুল্লাহ বকাউল আগামী ১৫ জানুয়ারি পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।গত ১৯ মার্চ লিমনের মা হেনোয়ারা বেগম বাদী হয়ে এই রিভিশন দায়ের করেছিলেন। এ নিয়ে ছয়বার রিভিশনের শুনানির তারিখ পেছাল। এর মধ্যে রাষ্ট্রপক্ষই পাঁচবার সময়ের আবেদন করে। লিমনকে গুলি করে হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ২০১১ সালের ১০ এপ্রিল হেনোয়ারা বেগম র‌্যাবের ছয় সদস্যকে আসামি করে আদালতে নালিশি মামলা করেন। ২৬ এপ্রিল রাজাপুর থানার পুলিশ ছয় র‌্যাব সদস্যর বিরুদ্ধে মামলা নথিভুক্ত করে। গত বছরের ১৪ আগস্ট বরিশাল র‌্যাব-৮-এর উপসহকারী পরিচালক লুৎফর রহমানসহ র‌্যাবের ছয় সদস্যকে লিমন হত্যাচেষ্টা মামলা থেকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়।১৮-দলীয় জোটের ঢাকা অভিমুখে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচি ঠেকাতে গতকাল শনিবার ভোর থেকে ঢাকার অদূরে সাভার ও আশুলিয়ায় মহাসড়ক কার্যত অবরোধ করে রেখেছে পুলিশ।ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের ঢাকার ধামরাইয়ের ধুলিভিটা, ইসলামপুর, আশুলিয়ার নবীনগর এবং সাভারের সিঅ্যান্ডবি, হেমায়েতপুর, আমিনবাজারসহ ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কের গাজীপুরের কালিয়াকৈরের চন্দ্রা, আশুলিয়ার বারইপাড়া, বলিভদ্র, জিরাব এবং আশুলিয়া সেতুর কাছে তল্লাশিচৌকি বসানো হয়। এসব চৌকিতে অবস্থান নিয়ে পুলিশ ঢাকাগামী বিভিন্ন গণপরিবহনে তল্লাশির নামে মহাসড়ক অবরোধ করে রাখে।গতকাল সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত ঢাকা-আরিচা ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়ক ঘুরে কোনো যাত্রীবাহী বাস চলাচল করতে দেখা যায়নি। তবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের টহল ছিল চোখে পড়ার মতো। ভোরের দিকে আশুলিয়ার বলিভদ্র, নবীনগর ও ধামরাইয়ের ধুলিভিটা এবং সাভারের হেমায়েতপুর এলাকায় দেশের উত্তর ও দক্ষিণবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে ছেড়ে আসা যাত্রীবাহী বাস আটকে দেওয়া হয়। পরে যাত্রীদের নামিয়ে দিয়ে বাসগুলো ফেরত পাঠানো হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাগামী হিউম্যান হলার, অটোরিকশা ও রিকশা চলাচলেও বাধা দেওয়া হয়। পুলিশি বাধার কারণে নিরুপায় যাত্রীরা হেঁটেই নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে বাধ্য হন।সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ছাত্রলীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীদের সাভার বাসস্ট্যান্ড এলাকায় লাঠি হাতে মহড়া দিতে দেখা যায়। তাঁরা ঢাকা অভিমুখী হিউম্যান হলার, রিকশা ও অটোরিকশা থামিয়ে যাত্রীদের নামিয়ে দেন। এ সময় তাঁরা পরিবহনশ্রমিকদের লাঞ্ছিত করেন। যাত্রীদের ব্যাগও তল্লাশি করতে দেখা যায় তাঁদের। সন্ধ্যায় বাসস্ট্যান্ড এলাকায় তাঁরা গণতন্ত্রের অভিযাত্রা কর্মসূচির বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেন। এ সময় ঢাকা-১৯ আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী ডা. এনামুর রহমান উপস্থিত ছিলেন। গ্রামের বাড়িতে সাপ্তাহিক ছুটি কাটিয়ে কুষ্টিয়া থেকে ঢাকায় ফিরছিলেন সরকারি কর্মকর্তা গোলাম মোস্তফা। কিন্তু পথে পথে পুলিশের বাধার কারণে সকালে রওনা হয়ে ঢাকার সাভার পৌঁছাতেই বিকেল গড়িয়ে যায়। ঢাকা-আরিচা ও ঢাকা-টাঙ্গাইল মহাসড়কে হাজার হাজার বাসযাত্রীকে একই ধরনের দুর্ভোগের শিকার হতে হয়। রেহাই পাননি হিউম্যান হলার, অটোরিকশা ও রিকশার যাত্রীরাও।গোলাম মোস্তফা জানান, এসবি পরিবহনের বাসে গতকাল সকালে তাঁর ঢাকায় পৌঁছানোর কথা ছিল। আগে থেকে বাসের টিকিটও করা ছিল। কিন্তু বাস না ছাড়ার কারণে তাঁকে বিকল্পভাবে ঢাকার উদ্দেশে রওনা হতে হয়। অটোরিকশা ও রিকশাযোগে বিকেলের দিকে তিনি আশুলিয়ার নবীনগরে পৌঁছান। তবে এখানে বেকায়দায় পড়েন তিনি। নবীনগর থেকে পুলিশ ঢাকাগামী হিউম্যান হলার, অটোরিকশা ও রিকশা চলাচল বন্ধ করে দেয়। এ কারণে তাঁকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে হয়।বাস চলাচল বন্ধ রাখা প্রসঙ্গে ধামরাই ও মানিকগঞ্জের কয়েকজন পরিবহননেতা জানান, পুলিশের চাপে তাঁরা বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন।আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এস এম বদরুল আলম বলেন, রাজধানীতে নাশকতা ঠেকাতে যানবাহনে তল্লাশি চালানো হয়। তবে কোনো বাধা দেওয়া হয়নি।
রাজধানীর মিরপুর ১০ নম্বরে গতকাল শুক্রবার মিনিবাসের ধাক্কায় সুলতান মাঝি (৫৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। পুলিশ চালকসহ স্বকল্প পরিবহনের ওই মিনিবাস আটক করেছে। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, সুলতান মাঝি পরিবার নিয়ে মিরপুর ২ নম্বরে এক বাসায় থাকতেন। তিনি ট্রলিতে ড্রামে করে বিভিন্ন এলাকায় কেরোসিন তেল বিক্রি করতেন।বর্তমান সরকার সকল পর্যায়ের স্থানীয় সরকার নির্বাচনে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়েছে। একটি নির্বাচন নিয়েও প্রশ্ন ওঠেনি। কিন্তু স্থানীয় সরকার শক্তিশালী করা বা ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণ করতে পারেনি। স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানকে ‘শক্তিশালী করা’র প্রতিশ্রুতি আওয়ামী লীগের নির্বাচনী ইশতেহারে থাকলেও সাংসদ ও আমলানির্ভর হয়ে এর শক্তি বরং খর্ব হয়েছে।বর্তমান সরকারের সময়ে সাড়ে পাঁচ হাজারের বেশি স্থানীয় সরকার নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। এসব নির্বাচনে সংঘাত-সহিংসতা ছিল অন্যান্য সময়ের তুলনায় কম। ভোটার পরিচয়পত্র থাকায় এসব নির্বাচনে জাল ভোটের অভিযোগও তেমন ওঠেনি।তবে উপজেলা ও ইউনিয়ন পরিষদের প্রতিনিধিদের সঙ্গে দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে সাংসদ ও প্রশাসনের। এই দ্বন্দ্বের কথা স্বীকার করেছেন স্থানীয় সরকারসচিবও। তবে তাঁর মতে, দীর্ঘদিন পর স্থানীয় সরকারে জনপ্রতিনিধিরা আসাতেই এই দ্বন্দ্ব। তাঁর দাবি, অন্য যেকোনো সরকারের তুলনায় এই সরকারের সময় স্থানীয় সরকারের সক্ষমতা বেড়েছে।এই সরকার প্রথমবারের মতো ইউনিয়ন পরিষদ আইন তৈরি করে ২০০৯ সালে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞসহ পরিষদের প্রতিনিধিরাও একে গুরুত্বপূর্ণ অর্জন বলে মনে করেন। তবে আইনটির কার্যকারিতা অনেক ক্ষেত্রেই নেই। যেমন—আইনে কৃষি, স্বাস্থ্য, পরিবার পরিকল্পনাসহ সরকারের সাতটি বিভাগ ইউনিয়ন পরিষদে হস্তান্তরের কথা থাকলেও তা আজও বাস্তবায়িত হয়নি।এখন ইউনিয়ন পরিষদে এক সচিব ছাড়া কোনো কর্মী নেই। আইনে একজন হিসাবরক্ষক দেওয়ার বিধান ছিল। সেটি হয়নি গত চার বছরে।বিধান আছে, ইউনিয়ন পরিষদ পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা করবে। পরিকল্পনা হয়, কিন্তু এর বাস্তবায়ন হয় না। কেননা, পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করার জন্য অর্থের সংস্থান দরকার; এর নিয়ন্ত্রণ পরিষদের হাতে নেই। এ ছাড়া স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরসহ সরকারের নানা বিভাগ যেসব উন্নয়নকাজ করে, সেসব কাজে পরিষদের কোনো মতামতই প্রাধান্য পায় না বলে অভিযোগ করেন বাংলাদেশ ইউনিয়ন পরিষদ ফোরামের (বিইউপিএফ) সভাপতি মাহবুবুর রহমান। তিনি বলেন, ‘আমরা একটি আইন পেয়েছি। কিন্তু কোনো ক্ষমতা আমাদের নেই।’আইনটির ৩৪ ধারায় ফৌজদারি মামলায় চেয়ারম্যান বা সদস্যদের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র আদালত গ্রহণ করলেই একজন চেয়ারম্যানকে বরখাস্ত করার বিধান রাখা হয়েছে। এই বিধানটিকে কালো অধ্যায় বলে মনে করেন মাহবুব। এ পর্যন্ত আইনের এই ধারায় শতাধিক চেয়ারম্যানকে বহিষ্কার করা হয়েছে। স্থানীয় সরকার বিশেষজ্ঞ তোফায়েল আহমেদ মনে করেন, এভাবে ক্ষমতায়িত তো করা হয়ইনি, বরং নিয়ন্ত্রণ আরও পোক্ত করা হয়েছে।সরকারের ক্ষমতায় আসার বছরেই ১৯ বছর পর উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে নির্বাচন অনুষ্ঠানের সাফল্যের পাশাপাশি স্থানীয় সরকারের এই স্তরকে অনেকটা ক্ষমতাহীনও করে ফেলে এই সরকারই। এত দিন উপজেলা পরিষদের উপদেষ্টা ছিলেন সাংসদেরা। কিন্তু ২০০৯ সালের এপ্রিলে উপজেলা পরিষদ আইনে সংশোধনী এনে উপজেলা পরিষদে সাংসদদের পরামর্শ গ্রহণকে বাধ্যতামূলক করা হয়।এভাবে সাংসদদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতা দেওয়ায় স্থানীয় পর্যায়ে নতুন নতুন দ্বন্দ্ব তৈরি হয়েছে। সাংসদ বনাম উপজেলা চেয়ারম্যান, চেয়ারম্যান বনাম উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দ্বন্দ্বে জর্জরিত স্থানীয় সরকারের এই স্তর।কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার চেয়ারম্যান আবদুল হাই ও ইউএনও সুব্রত পালের দ্বন্দ্ব প্রকাশ্য। উপজেলার ১১টি ইউনিয়নের চেয়ার ম্যানরা এই দুজনের পক্ষে দুই ভাগ হয়ে গেছেন। চেয়ারম্যান বলেন, ‘ইউএনও আমাকে পাত্তাই দেন না।’ তিনি জানান, সম্প্রতি একটি সভার চিঠি তিনি পেয়েছেন সভাটি হওয়ার ১৫ মিনিট আগে। আর ইউএনওর অভিযোগ, চেয়ারম্যান নিজের কাজে ব্যস্ত থাকেন। অফিসে আসেন না। চিঠি পাবেন কীভাবে?ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চেয়ারম্যান সুধীন সরকারের অভিযোগ, তিনি যে প্রকল্পের প্রস্তাব দেন, সাংসদ সেটাতে বিরোধিতা করেন। যদিও সাংসদ নিলুফার জাফর উল্যাহ এসব অভিযোগ অস্বীকার করেন।আইন অনুযায়ী সরকারি মোট ১৭টি বিভাগ ন্যস্ত হয়েছে উপজেলা পরিষদের হাতে। কিন্তু বিভাগগুলোর সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের নির্দেশে যে ১১০টি কমিটি আছে, উপজেলায় এর ৮৫টির সভাপতি ইউএনও।উপজেলার দুস্থদের ত্রাণের জন্য করা ভিজিডি কমিটি, কৃষি পুনর্বাসন কমিটির সভাপতি ইউএনওরা। স্কুলের বিদ্যোৎসাহী নিয়োগের ক্ষমতা সাংসদদের হাতে। দেখা গেছে, ভিজিডি কমিটিতে ইউএনওর মনোনীত দুজন প্রতিনিধি থাকলেও এখানে মূলত সাংসদদের কাছের লোকই নিয়োগ পান। এসব কমিটির প্রধান হওয়ায় ইউএনওরা এসব কাজের উপকারভোগী নির্ধারণ করার ক্ষেত্রে উপজেলা চেয়ারম্যানদের চেয়ে সাংসদের মতামতকেই প্রাধান্য দেন।বাংলাদেশ উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি হারুন-অর-রশিদ হাওলাদার বলেন, ‘আমরা নির্বাচিত প্রতিনিধি হলেও আর্থিক ও প্রশাসনিক কোনো ক্ষমতা আমাদের হাতে নেই। উপজেলায় এখন আমলাতন্ত্র আর সাংসদতন্ত্র চলছে।’স্থানীয় সরকারসচিব আবু আলম মো. শহীদ খান মনে করেন, উপজেলায় সাংসদদের উপদেশ বাধ্যতামূলকভাবে গ্রহণের বিধান পুনর্বিবেচনা করা উচিত। আর স্থানীয় আমলাদের সঙ্গে বিরোধ প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্য, দীর্ঘদিন ধরে ইউএনওরা এককভাবে সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করেছেন। তাই এখন জনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে মানিয়ে নিতে অসুবিধা হচ্ছে।নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি ছিল, জেলা পরিষদকে শিক্ষা, স্বাস্থ্য, আইনশৃঙ্খলা ও সব ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মপরিকল্পনা বাস্তবায়নের কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা হবে। সরকার ৬৩টি জেলা পরিষদে প্রশাসক পদে নিয়োগ দেয় জেলার দলীয় নেতাদের। আজ পর্যন্ত সেখানে নির্বাচন হয়নি।তোফায়েল আহমেদ মনে করেন, দলের লোকদের সুবিধা দেওয়ার জন্যই প্রশাসক নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, ক্ষমতা বিকেন্দ্রীকরণ সেখানে মুখ্য বিষয় নয়।জেলা পরিষদের প্রশাসকদের মর্যাদা এখনো নির্দিষ্ট করা হয়নি। বগুড়া জেলা পরিষদের প্রশাসক মকবুল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখানে একটা জগাখিচুড়ি হয়ে আছে। আমাদের অবস্থান কী, তা জানি না। ডিসিরা কী কাজ করছেন, তাও বুঝতে পারি না।’মালয়েশিয়ার পেনাংয়ে অনুষ্ঠানরত কমনওয়েলথ ভারোত্তোলন চ্যাম্পিয়নশিপে দুটি রুপা ও একটি ব্রোঞ্জ জিতেছে বাংলাদেশ। ৪৪ কেজি ওজন শ্রেণীতে জোহুরা আক্তার রেশমা রুপা জিতেছেন যুব বিভাগে। জুনিয়রদের বিভাগের ৫৮ কেজিতে ক্লিন অ্যান্ড জার্কে রুপা ও স্ন্যাচ, ক্লিন অ্যান্ড জার্ক মিলিয়ে ব্রোঞ্জ জিতেছেন মাবিয়া আক্তার সীমান্ত। এর আগে ২০১১ সালে থাইল্যান্ডে এশিয়ান ভারোত্তোলনে ব্রোঞ্জ জিতেছিলেন রেশমা, একই প্রতিযোগিতায় গত বছর নেপালে ব্রোঞ্জ জেতেন সীমান্ত।ক্রীড়া প্রতিবেদকখেলোয়াড়দের ড্রেসিং রুমের পাশেই যে ভিআইপি বক্স, সেখানে বসে সনি নর্দে আর মামুনুল ইসলাম। প্রথমজনের হালকা চোট, এই ম্যাচে তাই ঝুঁকি নেননি কোচ যোসেফ আপুসি। দ্বিতীয়জনের জ্বর। শেখ জামালের প্রাণভোমরা নর্দে আর দলের অধিনায়ক মামুনুল দুজনই মাঠের বাইরে বসে কাল দেখলেন দলের জয়।দুই গুরুত্বপূর্ণ খেলোয়াড়কে ছাড়া চট্টগ্রাম আবাহনীর বিপক্ষে ৩-১ জয়, পেশাদার লিগে এর চেয়ে ভালো সূচনা আর হতে পারত না সদ্য ফেডারেশন কাপজয়ী শেখ জামালের।নর্দে মাঠে থাকলে তিনিই আক্রমণে নেতৃত্ব দেন শেখ জামালের। নিজে গোল করেন, করানও। তাঁকে ঘিরেই শেখ জামালের খেলাটা আবর্তিত। মাঝমাঠ থেকে প্রয়োজনীয় সমর্থন মেলে মামুনুলের কাছ থেকে। এ দুজন না থাকায় কাল নিজের প্রিয় ছক ৪-৩-৩ বদলে শুরুতে ৪-২-৩-১ ছকে যান শেখ জামাল কোচ আপুসি। শেষ ৩০ মিনিট অবশ্য ৪-৩-৩-এ ফেরেন, যে কৌশলের কাছে এবার মার খাচ্ছে সব দলই।দুই মৌসুম পর পেশাদার লিগে ফিরে আসা চট্টগ্রাম আবাহনী নামে পাঁচজন ডিফেন্ডার নিয়ে। ওপরে একজন মাত্র স্ট্রাইকার রেখে চার মিডফিল্ডার। একমাত্র যে বিদেশি খেলোয়াড়কে নিয়ে মাঠে নামে তারা, তাঁকে কুড়ি মিনিট আগে তুলে নেওয়া হয়। শেষ সময়টা পুরোপুরি স্থানীয় খেলোয়াড় নিয়েও বেশ ভালোই খেলেছে চট্টগ্রাম আবাহনী।পেশাদার লিগে খেলার অভিজ্ঞতা চট্টগ্রাম আবাহনীর মাত্র দুজন খেলোয়াড়ের আছে। বাকিরা সবাই নিচের ডিভিশন থেকে উঠে আসা। এই আনকোরা অনভিজ্ঞ দল শক্তিতে অনেক এগিয়ে থাকা শেখ জামালের সঙ্গে লড়াই করার চেষ্টা করেছে, একটি গোলও করেছে। আরেকটিও হতে পারত। সেটি হলে চাপেই পড়ে যেত শেখ জামাল।দলে চোট সমস্যা, লিগে প্রথম ম্যাচ। তার ওপর ১৫ মিনিটে চট্টগ্রাম আবাহনী প্রথম গোলটা খেয়ে বসে খানিকটা গোলরক্ষক পিরুর ভুলে। বাঁ প্রান্ত থেকে লিংকনের বক্সে তোলা ক্রস ওয়েডসন হেড করলে বল ধরেও রাখতে পারেননি পিরু। শীতের কুয়াশামাখা সন্ধ্যায় বল তাঁর হাত ফসকে বেরিয়ে গেলে ডিফেন্ডার নাসিরের টোকায়  জালে। ফেডারেশন কাপের ফাইনালেও নাসিরই করেছেন জয়সূচক একমাত্র গোলটি। সেনাবাহিনী ছেড়ে আসা নাসির এখন রক্ষণ ছেড়ে ওপরে খেলার দাবি করতেই পারেন!নর্দে, মামুনুল না থাকায় এদিন জামাল উইং ব্যবহার করেছে বেশি। ৫০ মিনিটে দ্বিতীয় গোলও উইং থেকে আসা ক্রসে। ক্রস করেন সোহেল রানা, ডার্লিংটনের আলতো টোকায় বল জালে। জামালের তৃতীয় গোলও ডার্লিংটনের। আবু আবদুল্লার দূরপাল্লার শট চট্টগ্রাম আবাহনীর পোস্টের কোনায় লেগে প্রতিহত। ফিরতি বল একজনকে কাটিয়ে গোল করেন ডার্লিংটন।গোল না করেও নজর কেড়েছেন চট্টগ্রাম আবাহনীর সোহেল। পায়ে দুর্দান্ত ড্রিবলিং, ৮১ মিনিটে তাঁকে আটকাতে গিয়ে বক্সে ফাউল করেন নাসির। পেনাল্টিতে ৩-১, গোলদাতা মিলন।তবু স্বস্তির জয়ই শেখ জামালের। প্রতিপক্ষ শক্তিশালী হলে নর্দে-মামুনুলকে ছাড়া বড় পরীক্ষাই হয়তো দিতে হতো আপুসির দলকে!
চট্টগ্রামের হাটহাজারী থানায় আটক এক যুবক গতকাল শুক্রবার রাতে হাজতের ভেতরে দেয়ালে মাথা ঠুকে গুরুতর আহত হয়েছেন।আবদুল হাকিম (২২) নামের ওই যুবককে গত বুধবার কোনো মামলা ছাড়া পুলিশ আটক করেছিল বলে অভিযোগ। মাথা ঠুকে গুরুতর আহত হওয়ার পর শুক্রবার রাত সাড়ে নয়টার দিকে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উদ্দেশে থানা থেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছিল।স্থানীয় একটি কাপড়ের দোকানের কর্মচারী আবদুল হাকিম হাটহাজারী সদরের নুরুল আলমের ছেলে। জমিজমাসংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে বুধবার পুলিশ তাঁকে আটক করেছিল বলে পরিবারের অভিযোগ।আবদুল হাকিমের চাচা মো. সোলায়মান প্রথম আলোকে বলেন, ‘জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে পুলিশ আমার ভাতিজাকে আটক করে। তাকে কোনো মামলা ছাড়া তিন দিন থানা হাজতে আটকে রাখে। এ কারণে ক্ষোভে হাকিম নিজেই থানা হাজতের গ্রিল ও দেয়ালে মাথা ঠুকে আহত হয়।’বিষয়টি স্বীকার করে হাটহাজারী সার্কেলের এএসপি আ ফ ম নিজাম উদ্দিন বলেন, ‘এক যুবক আহত হয়েছেন। বিষয়টি আমি দেখছি। তাঁকে হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।’রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ নবম বিশ্ব ইসলামিক অর্থনৈতিক ফোরামে (ডব্ল্লিউআইইএফ) যোগদানের উদ্দেশে তিন দিনের সরকারি সফরে গতকাল সোমবার লন্ডন পৌঁছেছেন। খবর বাসসের।আমিরাতের একটি ফ্লাইটযোগে তিনি সকাল নয়টা ২০ মিনিটে হিথ্রো বিমানবন্দরে পৌঁছান। সেখানে তাঁকে স্বাগত জানান লন্ডনে বাংলাদেশের হাইকমিশনার মিজারুল কায়েস।রাষ্ট্রপতি আজ মঙ্গলবার এক্সেল লন্ডন কনভেনশন সেন্টারে ডব্লিউআইইএফের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন। একই দিন তিনি লন্ডনে মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী মোহাম্মদ নাজিব রাজাকের দেওয়া এক সংবর্ধনা ও নৈশভোজে যোগ দেবেন। যুবরাজ চার্লস মুসলিম দেশগুলোর নেতাদের সঙ্গে ওই নৈশভোজে যোগ দেবেন। এ ছাড়া রাষ্ট্রপতি আজ ওয়েস্টমিনস্টার মেথডিস্ট সেন্ট্রাল হলে বাংলাদেশি সম্প্রদায়ের সঙ্গে মিলিত হবেন।ডব্ল্লিউআইইএফ সম্মেলন শেষ হবে ৩১ অক্টোবর। আন্তর্জাতিক সম্মেলনের ফাঁকে ইসলামিক দেশগুলোর অন্য নেতাদের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির বৈঠকের কথা রয়েছে।প্রাইম ব্যাংক জেলা ফুটবল লিগে কাল মানিকগঞ্জে মানিকগঞ্জ সিটি ক্লাব ৪-১ গোলে হারিয়েছে ড্রাগন স্পোর্টিং ক্লাবকে। জয়ী দলের গফুর দুটি, বক্কর ও স্বাধীন ১টি করে গোল করেছেন। ড্রাগনের গোলদাতা শাহীন।ড্রাইভিং লাইসেন্সের আগেই বিমান চালনার লাইসেন্স পেয়েছেন অস্ট্রেলীয় ক্রিকেটার উসমান খাজা।
গ্যাস-সংকটের কারণে চট্টগ্রামের সরকারি চারটি বিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্র প্রায় এক মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়ায় লোডশেডিং বেড়ে গেছে। ফলে চট্টগ্রামের প্রায় দুই হাজার ছোট-বড় শিল্পকারখানা এবং সাড়ে পাঁচ লাখ আবাসিক বিদ্যুৎ গ্রাহককে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। চলতি বছরের ডিসেম্বরের আগে এগুলো পুরোপুরি সচল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। পেট্রোবাংলা এসব কথা জানিয়েছে। বন্ধ হয়ে যাওয়া চারটি সরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্র হচ্ছে রাউজানে ১০০ মেগাওয়াটের দুটি এবং শিকলবাহার ৬০ ও ১৫০ মেগাওয়াট পিকিং পাওয়ার প্ল্যান্ট।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক পেট্রোবাংলার এক শীর্ষ কর্মকর্তা প্রথম আলোকে বলেন, ‘গ্যাস সরবরাহের ক্ষেত্রে চট্টগ্রাম অঞ্চলের অবস্থান খুবই নাজুক। কারণ, সাঙ্গুর গ্যাসের স্তর একেবারে নিচে নেমে গেছে। ফলে এসব বিদ্যুৎকেন্দ্রে নিয়মিত গ্যাস সরবরাহ করা যাচ্ছে না। ডিসেম্বরে আশুগঞ্জের গ্যাস-হাবে কম্প্রেসার স্থাপনের কাজ শেষ হলে এ সমস্যার সমাধান হবে আশা করছি।’চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহসভাপতি (ভাইস প্রেসিডেন্ট) এ এম মাহবুব চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘চট্টগ্রামে বিদ্যুতের ঘন ঘন লোডশেডিংয়ের কারণে প্রতিদিন পোশাকশিল্প কারখানাসহ বিভিন্ন শিল্পপ্রতিষ্ঠানের মূল্যবান যন্ত্রপাতি নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সব মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ১০০ কোটি টাকার ব্যবসায়িক ক্ষতি হচ্ছে। এর মধ্যে শুধু বিদ্যুতের বিকল্প হিসেবে প্রতিদিন প্রায় ৫০ কোটি টাকার ডিজেল পোড়াতে হচ্ছে।’ বিদ্যুতের ঘন ঘন আসা-যাওয়ায় বাসাবাড়ি ও অফিস-আদালতে লোকজনের দুর্ভোগ বেড়ে গেছে। নগরের নাসিরাবাদ এলাকার বাসিন্দা আতিকুল ইসলাম বলেন, ‘দিন-রাত মিলিয়ে আমরা দু-তিন ঘণ্টা বিদ্যুৎ পাই কি না সন্দেহ। এতে ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা ব্যাহত হচ্ছে। মুঠোফোনের চার্জ দেওয়ার সমস্যাসহ বাসার বৈদ্যুতিক বিভিন্ন সরঞ্জামেরও ক্ষতি হচ্ছে। তীব্র গরমে বিদ্যুৎ না থাকার অস্বস্তি তো রয়েছেই।’বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা যায়, এ বছর আগস্টের মাঝামাঝি সময়ে গ্যাস-সংকটের কারণে রাউজানের দুটি এবং শিকলবাহার ৬০ কিলোওয়াট বিদ্যুৎকেন্দ্রটি বন্ধ হয়ে যায়। গত শনিবার শিকলবাহার অন্য বিদ্যুৎকেন্দ্রটিও বন্ধ হয়ে যায়। এ ছাড়া পানির স্তর নিচে নেমে যাওয়ায় কাপ্তাইয়ে পাঁচটি ইউনিটের মধ্যে একটি ইউনিট বন্ধ রয়েছে কয়েক দিন ধরে।বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড চট্টগ্রামের জ্যেষ্ঠ সহকারী পরিচালক মো. মুনিরুজ্জামান বলেন, গ্যাস সরবরাহ স্বাভাবিক হওয়ার আগ পর্যন্ত বন্ধ বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো চালু করা এবং বিদ্যুৎ-সংকট কাটিয়ে ওঠা সহজ হবে না।পিলখানা হত্যা মামলাটি ঢাকার মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হকের আদালত থেকে তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ আখতারুজ্জামানের আদালতে স্থানান্তর করা হয়েছে। ৩০ অক্টোবর (বৃহস্পতিবার) বহুল আলোচিত এই মামলায় রায়ের দিন ধার্য রয়েছে। গত ১৬ সেপ্টেম্বর মামলাটি স্থানান্তর করা হয়।আদালত সূত্র জানায়, ২০০৯ সালের ২৫-২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বাংলাদেশ রাইফেলসের (বিডিআর) সদর দপ্তর পিলখানায় বিদ্রোহ চলাকালে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জনকে হত্যা করা হয়। রাজধানীর বকশীবাজারে ঢাকা আলিয়া মাদ্রাসাসংলগ্ন মাঠে স্থাপিত অস্থায়ী মহানগর দায়রা জজ আদালতে ২০১১ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি এই হত্যা মামলার বিচারকাজ শুরু হয়। বিচারক হিসেবে নিয়োগ পান মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হক। এই আদালতে ২০১১ সালের ১২ জুলাই হত্যা এবং অস্ত্র-বিস্ফোরক আইনে দুটি অভিযোগপত্র জমা দেয় তদন্তকারী সংস্থা সিআইডি। এতে ৮২৪ জনকে আসামি করা হয়। পরে অধিকতর তদন্তে আরও ২৬ জনকে অন্তর্ভুক্ত করে বর্ধিত অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। জহুরুল হক ২০১১ সালের ১০ আগস্ট এ মামলার অভিযোগ গঠন করেন। এরপর দুই বছরের বেশি সময় ধরে তিনি মামলার বিচারকাজ পরিচালনা করেন। তাঁর অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত বিচারক হিসেবে বিভিন্ন সময়ে বিচারকাজ পরিচালনা করেছেন আখতারুজ্জামান। ১৬ সেপ্টেম্বর মামলাটি তৃতীয় মহানগর দায়রা জজ আদালতে স্থানান্তর করা হয়।জানতে চাইলে মহানগর দায়রা জজ জহুরুল হক প্রথম আলোকে বলেন, ‘একসঙ্গে দুটি আদালত চালানো সম্ভব হচ্ছিল না। পিলখানা হত্যা মামলাটি অনেক বড়। এতে বেশি সময় দিতে হয়। এ কারণে মামলাটি আমি স্থানান্তর করেছি।’আসামিপক্ষের আইনজীবী আমিনুল ইসলাম বলেন, ‘বিচারক যেই হোন না কেন, আমরা আশা করি ন্যায়বিচার পাব।’শহীদ মিলন দিবসের আলোচনা সভায় স্বৈরশাসক এরশাদের স্ত্রী রওশন এরশাদকে স্বাস্থ্যমন্ত্রীর দায়িত্ব দেওয়ার সমালোচনা করেছেন রাজনীতিবিদ ও চিকিৎসক নেতারা। তাঁরা সরকারকে এই সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করার আহ্বান জানিয়েছেন।গতকাল বুধবার ঢাকা মেডিকেল কলেজের মিলন চত্বরে চিকিৎসক নেতা শামসুল আলম মিলনের ২৩তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এই আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ মেডিকেল অ্যাসোসিয়েশন (বিএমএ) এই সভার আয়োজন করে। বিএমএর সভাপতি অধ্যাপক মাহমুদ হাসান এতে সভাপাতিত্ব করেন। বিগত বছরগুলোতে মৃত্যুবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিমন্ত্রণ জানানো প্রায় রেওয়াজে পরিণত হয়েছিল। এবার স্বাস্থ্যমন্ত্রীকে নিমন্ত্রণ জানানো হয়নি।তবে শহীদ মিলনের প্রসঙ্গের চেয়ে এ সভায় মহাজোট সরকারের গুণগান বেশি প্রাধান্য পায়। একাধিক আলোচক বলেন, মিলন যে ধরনের স্বপ্ন দেখেছিলেন মহাজোট সরকার তা বাস্তবায়নে বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। সভায় নির্বাচনকালীন সরকারের দুইজন মন্ত্রী মহাজোট আবার নির্বাচিত হলে জনগণের কী সুবিধা হবে তার বর্ণনা দেন।ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘নির্বাচনে সংলাপের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। নির্বাচনকে প্রতিহত করবেন না। জনগণের ভোটাধিকার নিয়ে ছিনিমিনি খেলবেন না।’তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, সবাইকে নিয়ে নির্বাচন করার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। বিএনপি এতে না এলেও একতরফা নির্বাচন হবে না। এটি হবে বহুদলীয় নির্বাচন। খালেদা জিয়ার নেতৃত্বে নির্বাচন বর্জনের ট্রেন ক্রমাগত পাকিস্তান ও আফগানিস্তানের দিকে যাচ্ছে।বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, ‘যাঁকে স্বাস্থ্যমন্ত্রী (রওশন এরশাদ) বানানো হয়েছে, তা মিলনের জন্য অবমাননাকর। শেষ মুহূর্তে এসে এভাবে আঘাত করার বিষয়টি আমি ব্যক্তিগতভাবে মেনে নিতে পারি না।’ তিনি বলেন, মিলনের ওপর যারা গুলি চালায় ও গুলি চালানোর হুকুমের আসামি স্বৈরশাসক এরশাদের বিচার হওয়া উচিত।নব্বইয়ের গণ-আন্দোলনের সময় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের (ডাকসু) সাধারণ সম্পাদক ছিলেন মোশতাক হোসেন। এই চিকিৎসক নেতা বলেন, যে স্বৈরাচার সরকার মিলনকে হত্যা করেছে তাদের প্রতিনিধিকে ঘাড়ের ওপর বসিয়ে দিলেই তা মেনে নেওয়া হবে না। সরকারকে সিদ্ধান্ত পাল্টাতে হবে।বিএমএর নেতা এবং অন্য চিকিৎসক নেতারা মিলনের দর্শন, আত্মত্যাগ, তাঁর ভেতরের শক্তিকে ধারণ করার আহ্বান জানান।বিএমএর মহাসচিব এম ইকবাল আর্সলান, গণতন্ত্রী পার্টির সাধারণ সম্পাদক নূরুর রহমান সেলিম সভায় বক্তব্য দেন।আগামী ৫ জানুয়ারির জাতীয় সংসদ নির্বাচন পিছিয়ে দিতে হবে। এর আগে সংবিধানের বিভিন্ন ধারার সুযোগ নিয়ে একটি অংশগ্রহণমূলক নির্বাচনের লক্ষ্যে অবরোধ, সহিংসতা ও নাশকতা বন্ধ, নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয়ে প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে ঐকমত্যের ভিত্তিতে ‘প্যাকেজ ডিল’ বা গুচ্ছ সমঝোতা হতে হবে।গতকাল শনিবার ‘সংকটে বাংলাদেশ: নাগরিক ভাবনা’ শীর্ষক আলোচনা সভায় দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনীতিবিদ, অর্থনীতিবিদ, আইনজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, ব্যবসায়ীরা এই আহ্বান জানান। বক্তারা এ সময় বলেছেন, ২৪ জানুয়ারি পর্যন্ত জাতীয় সংসদের মেয়াদ এখনো রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে দুই প্রধান দল নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে আলোচনা করে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে। জাতীয় সংসদ ভেঙে দিলে নির্বাচনকালীন সরকারব্যবস্থা নির্ধারণের জন্য আরও তিন মাস সময় পাওয়া যাবে। এর মধ্যেও নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে। এই সুযোগ সংবিধানের মধ্যেই রয়েছে।বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগ (সিপিডি), ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশ (টিআইবি), সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন) ও আইন ও সালিশ কেন্দ্র যৌথভাবে এই আলোচনার আয়োজন করে। গুলশানের লেকশোর হোটেলে অনুষ্ঠিত আলোচনা সভায় সভাপতিত্ব করেন সিপিডির চেয়ারম্যান অধ্যাপক রেহমান সোবহান। এতে আসন্ন নির্বাচন, চলমান রাজনৈতিক সংকট, হরতাল-অবরোধে অর্থনৈতিক ক্ষতি, সহিংসতাসহ বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা হয়।আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের কোনো নেতা উপস্থিত হননি। তবে বর্তমান মন্ত্রী রাশেদ খান মেনন অংশ নিলেও তিনি মন্ত্রী হিসেবে নন, রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে এসেছেন।নির্বাচন ও সমঝোতা: অধ্যাপক রেহমান সোবহান বলেন, ৫ জানুয়ারির নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে চলমান সমস্যার কোনো গঠনমূলক সমাধান হবে না। সংবিধানের আওতায় এই সমস্যা সমাধানের সুযোগ রয়েছে। আগামী ২৪ জানুয়ারির মধ্যে জাতীয় সংসদে আলোচনার মাধ্যমে একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান করা যেতে পারে। এ জন্য প্রধান দুই রাজনৈতিক দলকে ঐকমত্যে আসতে হবে। তিনি বলেন, সরকারের সমঝোতা করার এখনই সময়। কেননা, ৫ জুন নির্বাচনের পর তাদের আর বর্তমানের মতো গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বলেন, আলোচনায় বেশির ভাগ বক্তাই নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত দিয়েছেন। এই সংকট উত্তরণে দুই বড় রাজনৈতিক দলের মধ্যে গুচ্ছ সমঝোতা করতে হবে। আবার সমঝোতা হলেও ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন না হলে কী হবে—সেটাও চিন্তার বিষয়। তিনি বলেন, ‘রাজনৈতিক নেতারা ব্যর্থ হলে ধর্মীয় জঙ্গি নেতৃত্ব রাজনীতির মাঠে সামনে চলে আসবে। তাহলে একটা দীর্ঘ সময়ের জন্য অন্য পথে চলবে বাংলাদেশ। আমরা কি এটা চাই?’আরেক সাবেক উপদেষ্টা ও মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি রোকেয়া আফজাল রহমান বলেন, ‘৫ জানুয়ারি নির্বাচন হলে এর আগে-পরে কোনো শান্তি আসবে না। ব্যবসা-বাণিজ্য শেষ হয়ে যাচ্ছে। আমরা গ্রহণযোগ্য নির্বাচন চাই, গ্রহণযোগ্য অন্তর্বর্তীকালীন সরকার চাই।’আসন্ন নির্বাচন স্থগিত করার পক্ষে মত দিয়ে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের আরেক উপদেষ্টা হোসেন জিল্লুর রহমান নাগরিক সমাজের পক্ষ থেকে আগামী ১ জানুয়ারি সংসদ ভবনের সামনে সমাবেশ আয়োজনের প্রস্তাব করেন। তিনি বলেন, যে ভোটাধিকার নব্বইয়ের আন্দোলনের বড় ফসল, তা আজ উঠে যাচ্ছে। অর্থনীতি পিছু হটতে শুরু করেছে। প্রবীণ আইনজীবী রফিক-উল হক বলেন, ‘বাইরের লোক ডেকে এনে নয়, দুই নেত্রীকেই সংকট নিরসনে আলোচনায় বসতে হবে। দুই নেত্রীকে বলব, দেশের স্বার্থে সমঝোতায় আসুন। সংবিধানের আলোকেই নির্বাচন পেছানো যাবে। সময় আরও ৯০ দিন বাড়ানো যাবে। গণতন্ত্রকে গণতন্ত্রের মতো চলতে দিন।’সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা মইনুল হোসেন বলেন, সংবিধানের পঞ্চদশ সংশোধনী বহাল থাকলে সব দলের অংশগ্রহণে নির্বাচন কখনোই হবে না। পঞ্চদশ সংশোধনী গণতন্ত্রের জন্য চরম আঘাত। ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, এই নির্বাচন সংবিধানের মূল চেতনায় হচ্ছে না। সংবিধানে যে নির্বাচনের কথা বলা হয়েছে, সেই আলোকে আসন্ন নির্বাচন বন্ধে আদালতের মতামত নেওয়া যায় কি না, তা দেখতে হবে। তিনি মত দেন, আসন্ন নির্বাচন হলে আওয়ামী লীগ একটি কলঙ্কময় দল হিসেবে চিহ্নিত হবে। মাহ্ফুজ আনামের মতে, নবম জাতীয় সংসদ পুনরুজ্জীবিত করে দুই প্রধান দল আলোচনার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন নিয়ে ঐকমত্যে পৌঁছাতে পারে। এই বিষয়ে রাষ্ট্রপতির শরণাপন্ন হওয়া যেতে পারে। ৫ জানুয়ারি নির্বাচন হলে আরও প্রাণহানি হবে। একটা প্রাণ বাঁচানোও সবার দায়িত্ব।বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শমসের মবিন চৌধুরী বলেন, প্রহসনের নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া উচিত। মানুষের জন্য এই সংবিধান। এটা কোনো ধর্মীয় গ্রন্থ নয় যে পরিবর্তন করা যাবে না। মানুষের জন্য না হয় আরেকটা সংশোধনী আনা হোক। তাঁর মতে, বর্তমান ক্ষমতাসীনদের আচরণ নির্বাচিত স্বৈরতন্ত্রের মতো।প্রথম আলোর সহযোগী সম্পাদক আব্দুল কাইয়ুম বলেন, সমঝোতার মাধ্যমে নির্বাচনকালীন সরকারের সংজ্ঞা পরিষ্কার করতে হবে।সহিংসতার রাজনীতি: প্রবীণ শিক্ষাবিদ আনিসুজ্জামান বলেন, জনগণকে সম্পৃক্ত করে আন্দোলনে না গিয়ে বিরোধী দলের দেওয়া কর্মসূচিতে জনজীবন বিপর্যস্ত হলো, খেটে খাওয়া মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হলো। অর্থনীতি ভেঙে পড়ছে। তিনি সংকট উত্তরণে নাগরিক সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ আবদুল্লাহ আবু সাইয়ীদ বলেন, ‘রোম যখন পুড়িতেছিল, নিরো তখন বেহালা বাজাইতেছিল। আমাদের নিরোরা বাঁশি বাজিয়েই চলেছেন।’ তিনি উদাহরণ দিয়ে বলেন, ‘সাধারণত “বাপ” ভালো থাকে, আর ছেলেরা দুষ্ট হয়। কিন্তু আমরা ২৩ বছর ধরে এমন অবস্থায় আছি যে, বাপেরা সমস্যা করছে। প্রকৃত গণতন্ত্র দেশে আসেনি, এসেছে স্বৈরতান্ত্রিক গণতন্ত্র। যে দল ক্ষমতায় যায়, সেই দলই সর্বময় স্বৈরতান্ত্রিক শক্তি নিয়ে আসে। সে জন্যই দুর্নীতি ও দলবাজি বাড়ছে।’রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রার নামে ৫ মের পুনরাবৃত্তি জনগণ ও রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে মেনে নিতে পারি না। গাছ কাটা, রেলের ফিশপ্লেট তুলে ফেলা, অবরোধ—এগুলো গণতন্ত্র কি না, জানি না। আজকের আলোচনার মাধ্যমে আমরা অগণতান্ত্রিক শক্তিকে ডাকছি কি না, তাও জানি না।’ তিনি প্রশ্ন তোলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে গুচ্ছ সমঝোতা বিএনপি-জামায়াত মেনে নেবে? আলোচনায় যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিষয়টি হালকাভাবে আলোচনা হয়েছে বলে তিনি মত দেন।টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান বলেন, রাজনীতির অসুস্থ প্রতিযোগিতার কারণে স্বাধীনতার উদ্দেশ্য ধূলিসাৎ হতে চলেছে। লগি-বইঠার উত্তরে দা-কুড়াল, পেট্রলবোমা; ১৫ ফেব্রুয়ারির নির্বাচনের উত্তরে ৫ জানুয়ারির নির্বাচন। সহিংসতায় লাভবান হচ্ছে অগণতান্ত্রিক শক্তি।বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য মাহবুবুর রহমান বলেন, গণতন্ত্র রক্ষায় যদি দরকার হয় আরেকটা একাত্তর হোক। অর্থনীতি ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে, জাতীয় নিরাপত্তা সংকটে পড়ছে। তিনিও নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার পক্ষে মত দেন।বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান খান বলেন, গণতন্ত্র ও মুক্তিযুদ্ধকে ধর্মের বিরুদ্ধে দাঁড় করানোর চেষ্টা চলছে। গণতন্ত্রকে বাদ দিয়ে মুক্তিযুদ্ধকে রক্ষা করা যাবে না। বিশিষ্ট কলামিস্ট সৈয়দ আবুল মকসুদ বলেন, ১৯৭১ সালের পর এমন সংকটে আর কখনো পড়েনি দেশ। মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের ট্রাস্টি সারওয়ার আলী বলেন, মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার দ্রুত করা দরকার। সংকটে ব্যবসা-বাণিজ্য: বিশিষ্ট ব্যবসায়ী ও সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা তপন চৌধুরী বলেন, রাজনৈতিক সহিংসতায় কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে মালিক-শ্রমিক সবাইকে না খেয়ে মরতে হবে। যাদের অর্থনীতিতে কোনো অবদান নেই, তারাই সহিংসতা ছড়িয়ে দিচ্ছে।ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আনিসুল হক বলেন, গত তিন মাসে প্রায় চার হাজার কোটি টাকার তৈরি পোশাক উড়োজাহাজে করে গন্তব্যে পাঠাতে হয়েছে। সরকারের রাজস্ব আয় নেমে যাচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কয়েক মাস পর বেতন-ভাতা দিতে পারবে না সরকার।অনুষ্ঠানের সঞ্চালক সিপিডির বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য বলেন, বর্তমান সংকট সমাধানে রাজনৈতিক নেতাদের ইচ্ছা কতটা কাজ করবে, সেটাই বড় কথা। তাই নাগরিক সমাজ তাঁদের (রাজনৈতিক নেতারা) ওপর চাপ দিতে পারবে কি না, সেটাও দেখার বিষয়। তাঁর মতে, ৫ জানুয়ারি নির্বাচন আবার দেশকে একটি নতুন সংঘাতের দিকে নিয়ে যাবে। আলোচনা সভায় আরও বক্তব্য দেন সিপিডির বিশেষ ফেলো রওনক জাহান, সুজন সম্পাদক বদিউল আলম মজুমদার, সিপিডির নির্বাহী পরিচালক মোস্তাফিজুর রহমান, নারীনেত্রী আয়শা খানম, বাংলাদেশ উন্নয়ন গবেষণা প্রতিষ্ঠানের (বিআইডিএস) সাবেক গবেষণা পরিচালক এম আসাদুজ্জামান, আইনজীবী সালমা আলী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক আসিফ নজরুল, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পিয়াস করিম, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সভাপতি রিয়াজউদ্দিন আহমেদ, মানবজমিন-এর প্রধান সম্পাদক মতিউর রহমান চৌধুরী, পরিবেশ আইনবিদ সমিতির নির্বাহী পরিচালক সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান, স্থপতি মোবাশ্বের হোসেন, বিকেএমইএর সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, বাংলাদেশ এমপ্লয়িজ অ্যাসোসিয়েশনের সাবেক সভাপতি কামরান এইচ চৌধুরী, আন্তর্জাতিক মানবতাবিরোধী ট্রাইব্যুনালের আইনজীবী রানা দাশগুপ্ত, ডেমক্রেসিওয়াচের নির্বাহী পরিচালক তালেয়া রেহমান, জাতীয় পার্টির (জেপি) চেয়ারম্যান আন্দালিব রহমান প্রমুখ।
প্রত্যর্পণযোগ্য অর্পিত সম্পত্তির তালিকা থেকে ‘খ’ তফসিলভুক্ত সম্পত্তি বাদ দেওয়া হচ্ছে। এটি হলে এ ধরনের সম্পত্তি প্রত্যর্পণ-প্রক্রিয়ায় আসবে না। যার দখলে আছে, তার কাছেই থাকবে।গত রোববার সচিবালয়ে আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ, ভূমিমন্ত্রী রেজাউল করিম, প্রতিমন্ত্রী মোস্তাফিজুর রহমানসহ ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের মধ্যে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এই বিষয়ে প্রাথমিক সিদ্ধান্ত হয়।বৈঠক সূত্র জানায়, প্রধানমন্ত্রীর আগ্রহে এই সিদ্ধান্ত হয়। সংসদের চলতি অধিবেশনে সংশ্লিষ্ট আইনটি সংশোধন করে বিল পাস হতে পারে।ব্যক্তির নিয়ন্ত্রণে থাকা সম্পত্তি ‘খ’ তফসিলভুক্ত অর্পিত সম্পত্তি। এসব সম্পত্তি ব্যক্তিমালিকানায় থাকলেও সরকার বিভিন্ন সময়ে অর্পিত সম্পত্তির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করে। এর মধ্যে বেশির ভাগই মূল মালিকের দখলে আছে। কিছু বেদখলও হয়ে গেছে। অর্পিত সম্পত্তি প্রত্যর্পণের জন্য সরকার ২০১১ সালে প্রত্যর্পণ আইন করে। এ জন্য জেলা পর্যায়ে ‘ট্রাইব্যুনাল’ ও ‘জেলা কমিটি’ সৃষ্টি করা হয়। এ বছরের জুলাই মাস পর্যন্ত কমিটি ও ট্রাইব্যুনাল মিলিয়ে চার লাখ নয় হাজার ৯১৩ মামলা দায়ের করা হয়। কিন্তু এ পর্যন্ত মাত্র ১১ হাজার ৩২৯টি মামলা নিষ্পত্তি হয়। এই দীর্ঘসূত্রতা ব্যাপক অসন্তোষ তৈরি করে। এখন সরকার চাচ্ছে, মূল মালিকের দখলে থাকা সম্পত্তি তার দখলে থাকবে। এখন আদালতের মাধ্যমে প্রত্যর্পণ-প্রক্রিয়া বন্ধ হবে।১৯৬৫ সালে পাকিস্তান-ভারত যুদ্ধের প্রেক্ষাপটে ১৯৬৫ থেকে ১৯৬৯ সালের ১৬ ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত যেসব নাগরিক এ দেশ থেকে ভারতে চলে যান, তাঁদের স্থাবর সম্পত্তি তৎকালীন পাকিস্তান সরকার শত্রু সম্পত্তি হিসেবে চিহ্নিত করে। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৭৪ সালে নাম পরিবর্তন করে অর্পিত সম্পত্তি করা হয়।বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় অর্পিত সম্পত্তি মূল মালিক বা তাঁদের উত্তরাধিকারদের কাছে ফিরিয়ে দিতে একটি আইন করে। কিন্তু ক্ষমতা বদলের পর সেটি কার্যকর হয়নি। এবার ক্ষমতায় আসার পর আবারও সেই উদ্যোগ নেওয়া হয়।হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদসহ বিভিন্ন নাগরিক ও মানবাধিকার সংগঠন ‘খ’ তফসিল বাতিলের দাবি করে আসছিল।অনশন: অর্পিত সম্পত্তি ‘খ’ তফসিল সম্পূর্ণ বাতিল, প্রত্যর্পণে সব বাধা দূর করা এবং প্রস্তাবিত দেবোত্তর সম্পত্তি ব্যবস্থাপনা আইন, ২০১৩ বাতিলের দাবিতে আজ সকাল-সন্ধ্যা অনশন কর্মসূচির ডাক দিয়েছে হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদ ও বাংলাদেশ পূজা উদ্যাপন পরিষদ। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে এই কর্মসূচি পালিত হবে।তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন, দুই নেত্রীর ফোনালাপের কথাবার্তা পত্রপত্রিকায় আংশিকভাবে ছাপানো হচ্ছে। তাই এই কথাবার্তা দেশের সামনে প্রকাশ করা উচিত।গতকাল সোমবার সচিবালয়ে নিজ দপ্তরে সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে মন্ত্রী এ কথা বলেন।তথ্যমন্ত্রী বলেন, বিরোধীদলীয় নেতা দুই দিনের আলটিমেটাম দিলেন, এরপর প্রধানমন্ত্রী ফোন করলেন। এর পরও হরতাল দিয়ে বিরোধীদলীয় নেতা নিজের সঙ্গে নিজে বিশ্বাসঘাতকতা করলেন। তিনি খালেদা জিয়াকে উদ্দেশ করে বলেন, ‘আল্লাহ কি উনার দিলে রহম দেননি? এখন এক লাখ হজযাত্রী দেশে ফিরছেন, গ্রামের বাড়িতে যাবেন, ২১ লাখের বেশি জেএসসি পরীক্ষার্থীর শেষ প্রস্তুতি চলছে। এ রকম অবস্থায় হরতাল অমানবিক ও দেশবিরোধী।’ফেডারেশন কাপ: কোয়ার্টার ফাইনালমোহামেডান-শেখ জামাল(বিকেল ৫টা, বঙ্গবন্ধু স্টেডিয়াম)ঢাকার দোহার উপজেলায় পুলিশি বাধায় আওয়ামী লীগের নির্বাচনী সভা পণ্ড হয়ে গেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল শনিবার বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে উপজেলা সদরে দলীয় কার্যালয়ের সামনে উপজেলা যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগ আয়োজিত নির্বাচনী সভায় মাইক ব্যবহারকে কেন্দ্র করে পুলিশের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির একপর্যায়ে এ ঘটনা ঘটে।প্রত্যক্ষদর্শী ও নেতা-কর্মীরা জানান, বিকেলে দলীয় কার্যালয়ে সামনে উপজেলা যুবলীগ ও স্বেচ্ছাসেবক লীগের নির্বাচনী সভা চলছিল। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে সাবেক প্রতিমন্ত্রী ও ঢাকা-১ আসনের আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী আবদুল মান্নান খানের বক্তব্য শুরু হলেই দোহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামরুল ইসলাম মিঞা আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে সভাস্থলের মাইক বন্ধ করে দেন। এ সময় পুলিশের সঙ্গে আবদুল মান্নান খানের কথা-কাটাকাটি হয়। একপর্যায়ে নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বাধলে পুলিশ সভাস্থল থেকে চলে যায়। পরে সেনাবাহিনীর একটি টহল দল সভাস্থলে পৌঁছালে নেতা-কর্মীরা সভাস্থল ত্যাগ করেন।এ বিষয়ে উপজেলা যুবলীগের সভাপতি মোহামঞ্চদ আলমাছ উদ্দিন বলেন, প্রশাসনের পূর্ব অনুমতি নিয়ে সভার আয়োজন করা হয়। দলীয় প্রার্থী আবদুল মান্নান খানের বক্তব্যের সময়ে পুলিশ মাইকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়। নেতা-কর্মীরা বাধা দিলে পুলিশ তাঁদের ওপর লাঠিপেটা করে।আবদুল মান্নান খান বলেন, পুলিশ প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর কাছ থেকে অবৈধভাবে লাভবান হওয়ার জন্য কুচক্রী মহলের প্ররোচনায় উত্সাহিত হয়েছে। নির্বাচনী বিধি মোতাবেক রাত আটটা পর্যন্ত মাইক চালানোর নিয়ম থাকলেও পুলিশ বিকেল পাঁচটায় মঞ্চে এসে মাইকের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেয়।ওসি কামরুল ইসলাম মিঞা জানান, রিটার্নিং কর্মকর্তার নির্দেশে তাঁদের মাইক বন্ধ করতে অনুরোধ করা হয়। এ সময় তাঁরা পুলিশের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে ওঠেন।সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা ও দোহার উপজেলার ইউএনও শামীমুল হক বলেন, নির্বাচনী আচরণবিধিমালায় সমাবেশ করার কোনো নিয়ম নেই। তাই তাঁদের বাধা দেওয়া হয়েছে।
পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দাম কমলেও রাজধানীর খুচরা বাজারে তার কোনো প্রভাব পড়েনি। গতকাল শুক্রবারও বিভিন্ন বাজারে পেঁয়াজের বর্ধিত মূল্য দেখা গেছে। ফলে পাইকারিতে দাম কমার সুবিধা পাচ্ছে না সাধারণ মানুষ।গতকাল কারওয়ান বাজার, মিরপুরের কাজীপাড়াসহ একাধিক বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ মানভেদে ৭০ থেকে ৭৫ টাকা এবং আমদানি করা ভারতীয় পেঁয়াজ ৮০ থেকে ৯০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। অথচ পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজের দাম ৭০ টাকার নিচে নেমে এসেছে।আমদানিকারক ও পাইকারি বিক্রেতারা বলছেন, পেঁয়াজের আমদানি বেড়েছে। ফলে দাম কমছে। যে সংকট তৈরি হয়েছিল, আমদানি বৃদ্ধি পাওয়ায় তা আর নেই। মজুত বৃদ্ধি পাওয়ায় পাইকারি বাজারে পেঁয়াজের দামও নিম্নমুখী।যশোরের বেনাপোলের আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান হামিদ এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারী আবদুল হামিদ সরদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গতকাল দেশের বিভিন্ন অঞ্চলের পাইকারি বিক্রেতাদের কাছে ভারতীয় পেঁয়াজ ৬০ থেকে ৬৫ টাকা কেজিতে বিক্রি করেছি। গত সপ্তাহে এই দাম ছিল ৬৮ থেকে ৭০ টাকা। এখন আগের চেয়ে আমদানির পরিমাণ বেড়েছে। ফলে দাম পড়তে শুরু করেছে।’আবদুল হামিদ জানান, কোরবানির ঈদ সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম বৃদ্ধির আশঙ্কা নেই।রাজধানীর শ্যামবাজারের পাইকারি প্রতিষ্ঠান রতন এন্টারপ্রাইজের মালিক রতন সাহা বলেন, গতকাল পাইকারি বাজারে প্রতি কেজি ভারতীয় পেঁয়াজ মানভেদে ৫০ থেকে ৭৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬৪-৬৫ টাকায়। পাইকারিতে দাম কমার প্রভাব খুচরা বাজারে না থাকার কারণ সম্পর্কে তিনি বলেন, খুচরা বিক্রেতারা এক বস্তা পেঁয়াজ কিনলে তা বিক্রি করতে বেশ কয়েক দিন লাগে। এতে কিছু পেঁয়াজ হয়তো নষ্ট হয়। বাকি পেঁয়াজ থেকে ওই ক্ষতি পুষিয়ে নেন তাঁরা। তাই পাইকারিতে দাম কমলেও খুচরা বাজারে তার প্রভাব দেখা যাচ্ছে না।রতন সাহা আরও বলেন, ভারতে যত দিন পেঁয়াজের বাজার স্থিতিশীল না হবে, তত দিন বাংলাদেশেও এর দামের উত্থান-পতন থাকবে।এদিকে একাধিক কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, শাকসবজির দাম প্রায় স্থিতিশীল রয়েছে। কমেছে বোতলজাত সয়াবিন (পাঁচ কেজি) তেল ও চিনির দাম। গতকাল পাঁচ কেজির বোতলজাত সয়াবিন তেল বিক্রি হয় ৫৭০ থেকে ৫৭৫ টাকায়। আগের সপ্তাহের চেয়ে দাম কমেছে ১৫ টাকা। চিনির দাম আগের সপ্তাহের চেয়ে কেজিতে দুই-তিন টাকা কমে বিক্রি হচ্ছে ৪২-৪৩ টাকায়।কারওয়ান বাজারে গতকাল প্রতি কেজি বেগুন ও কাঁকরোল ২৫ টাকা, টমেটো ৬৫, আলু ১৫, পটোল ২০, বরবটি ৪০, ঢ্যাঁড়স ৩০-৪০ এবং ছোট ও মাঝারি আকারের প্রতিটি লাউ ২০ থেকে ২৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।মাছের বাজারে বড় আকারের প্রতি হালি ইলিশ এক হাজার ৮০০ থেকে দুই হাজার টাকা। প্রতিটি ৮০০ গ্রাম ওজনের এক হালি ইলিশের দাম এক হাজার ২০০ থেকে এক হাজার ৪০০ টাকা। রুই প্রতি কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা এবং তেলাপিয়া ১৩০ টাকায় বিক্রি হয়েছে।দেশের চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন ব্যবসায়ী সমাজ। এই অবস্থায় করণীয় নির্ধারণে গতকাল সোমবার রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে জরুরি বৈঠক করেছেন শীর্ষ ব্যবসায়ী নেতারা। সন্ধ্যা ছয়টা থেকে শুরু হয়ে দুই ঘণ্টাব্যাপী এই বৈঠক চলে।জানা গেছে, চলমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে ব্যবসায়ীদের অবস্থান তুলে ধরার জন্য নেতারা বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশনকে (এফবিসিসিআই) দায়িত্ব দিয়েছেন। এ পরিস্থিতিতে আজ মঙ্গলবার বিশেষ সভা করবে এফবিসিসিআই। সভা শেষে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে ব্যবসায়ীদের অবস্থান তুলে ধরা হবে বলে গতকালের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়।বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুণ, আবদুল আউয়াল মিন্টু, সালমান এফ রহমান, মীর নাসির হোসেন, এ কে আজাদ, আনিসুল হক ও আকরাম হোসেন; এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি কাজী আকরাম উদ্দিন আহমেদ, মেট্রোপলিটন চেম্বারের সভাপতি রোকেয়া আফজাল রহমান, বাংলাদেশ তৈরি পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) সভাপতি মো. আতিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ নিট পোশাক প্রস্তুত ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিকেএমইএ) সভাপতি সেলিম ওসমান, ঢাকা চেম্বারের সভাপতি সবুর খান প্রমুখ।জানতে চাইলে বৈঠকে উপস্থিত এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাজনৈতিক সংকটে ব্যবসায়ীদের অবস্থান তুলে ধরার জন্য আমরা এফবিসিসিআইকে দায়িত্ব দিয়েছি। বিশেষ সাধারণ সভার পর আগামীকাল (আজ) সংগঠনটি ব্যবসায়ীদের অবস্থান বা বক্তব্য তুলে ধরবে।’যোগাযোগ করা হলে এ কে আজাদ প্রথম আলোকে বলেন, ‘চলমান সংকট নিরসনে ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে প্রয়োজনে দুই নেত্রীর সঙ্গে দেখা করার বিষয়ে বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে। এ ছাড়া হরতাল বা সহিংস রাজনৈতিক কর্মসূচির পরিবর্তে দুই নেত্রী যেন আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধান করেন, সেই আহ্বানও ব্যবসায়ীদের পক্ষ থেকে জানানো হবে।’বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচির কারণে সহিংসতা, নাশকতা ও প্রাণহানির দায়ে বিরোধীদলীয় নেত্রী খালেদা জিয়া হুকুমের আসামি হতে পারেন বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক শুরুর আগে দেওয়া বক্তৃতায় শেখ হাসিনা খালেদা জিয়ার কঠোর সমালোচনা করে বলেন, ‘এর দায় বিরোধীদলীয় নেতাকেই নিতে হবে। একসময় উনিও হুকুমের আসামি হিসেবে চিহ্নিত হবেন।’দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে গতকাল বুধবার ধানমন্ডির দলীয় কার্যালয়ে আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠক হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন শেখ হাসিনা। দুপুর পৌনে ১২টায় বৈঠক শুরু হয়ে তা বেলা দুইটায় শেষ হয়। ওই সময়ে রংপুর বিভাগের প্রার্থী চূড়ান্ত হয় বলে জানা গেছে। এরপর সন্ধ্যায় গণভবনে সংসদীয় বোর্ডের মুলতবি বৈঠক শুরু হয়ে তা গভীর রাত পর্যন্ত চলে।বিরোধী দলের কর্মসূচির সমালোচনা করে শেখ হাসিনা বলেন, একাত্তরের হানাদার বাহিনীর মতো তারা মানুষ মারা শুরু করেছে। নির্বাচন হচ্ছে মানুষের সাংবিধানিক অধিকার। বিরোধীদলীয় নেত্রী মানুষের সাংবিধানিক অধিকার ক্ষুণ্ন করছে। নির্বাচন অফিসে হামলা করছে। সাধারণ মানুষের যানবাহনের ওপর হামলা চালানো হচ্ছে। এখন যদি বিরোধীদলীয় নেতাদের গাড়ির নম্বর জোগাড় করে তা পোড়ানো হয়, জনগণ যদি প্রতিশোধ নেয় তাহলে কেমন হবে!শেখ হাসিনা বলেন, ‘হাইকোর্ট থেকে জামায়াতের নির্বাচনের ওপর নিষেধাজ্ঞা আছে। এখানে আমাদের কিছুই করার নেই। জামায়াত নির্বাচন করতে পারছে না বলে বিএনপিও নির্বাচনে আসছে না। এটা খুবই দুঃখজনক। বিরোধীদলীয় নেত্রী যুদ্ধাপরাধীদের স্বার্থ রক্ষা করতে গিয়ে জনগণের স্বার্থ বিসর্জন দিচ্ছেন।’বিরোধীদলীয় নেতাকে আবারও নির্বাচনে আসার আহ্বান জানিয়ে শেখ হাসিনা বলেন, ‘আমি তাঁকে সংবিধানের ৫৭(৩) ধারাটি পড়ে দেখতে বলব। উনি কি আবার ওয়ান-ইলেভেন আনতে চান? কার স্বার্থে? উনার কোনো লাভ হবে না।’নির্দিষ্ট সময়ে দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিষয়ে সরকারের দৃঢ় অবস্থানের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ বন্ধ করেন। যে আশায় এসব করছেন তা পূরণ হবে না। নির্বাচন সময়মতোই হবে।বিগত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের কথা মনে করিয়ে দিয়ে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী বলেন, ‘তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টারা নির্বাচন করতে ব্যর্থ হয়ে দফায় দফায় পদত্যাগ করেন। নির্বাচন অনুষ্ঠানে তাঁরা বারবার ব্যর্থ হয়েছিলেন।মুন্সিগঞ্জের গজারিয়া উপজেলার হোগলাকান্দি গ্রামে গত শুক্রবার দিবাগত রাতে এক পুলিশ সদস্যের ঘরে ডাকাতি হয়েছে। এ সময় ডাকাত দল তিনজনকে কুপিয়ে জখম করে।এলাকাবাসী ও পরিবার সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার রাতে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে পাঁচ-সাতজনের ডাকাত দল ঢাকার লালবাগ থানায় কর্তব্যরত পুলিশ কনস্টেবল মো. হানিফার গ্রামের বাড়িতে ঢোকে। তারা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে হানিফার স্ত্রী শিউলি বেগম (৩০), মেয়ে স্কুলছাত্রী হাবিবা খানম (১৩) ও বাবা মো. সানাউল্লাহকে (৭০) কুপিয়ে জখম করে। ডাকাত দল ঘর থেকে প্রায় আড়াই ভরি স্বর্ণালংকার ও নগদ ৫০ হাজার টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
দুটি গ্র্যান্ড স্লামসহ নয়টি শিরোপা। ৬৭ জয়ের বিপরীতে হার মাত্র ৪টি! ইতিহাসের প্রথম মহিলা খেলোয়াড় হিসেবে ইতিমধ্যেই গড়েছেন এক মৌসুমে ৯০ লাখ ডলারের বেশি আয়ের রেকর্ড। ২০১৩ সালটি সত্যিকার অর্থেই সেরেনা উইলিয়ামসের জন্য সোনায় মোড়ানো এক বছর! বছরজুড়ে ধারাবাহিকতার পুরস্কার মিলল আরও একটি। ক্যারিয়ারে তৃতীয়বারের মতো এক নম্বরে থেকে বছর শেষ করতে যাচ্ছেন সেরেনা।গতকাল ডব্লুটিএ নিশ্চিত করেছে, বছর শেষে সেরেনাই থাকছেন এক নম্বরে। মানে পরিষ্কার, ইউএস ওপেনের পর থেকেই কোর্টের বাইরে থাকা সেরেনা বছরের বাকি টুর্নামেন্টগুলো না খেললে বা খেলে হেরে গেলেও এক নম্বর আসনটি তাঁর হাতছাড়া হচ্ছে না। এর আগে ২০০২ ও ২০০৯ সালেও এক নম্বরে বছর শেষ করেছিলেন ১৭টি গ্র্যান্ড স্লামজয়ী। গত ফেব্রুয়ারিতে সেরেনা শীর্ষে উঠেছিলেন ১৯৭৫ সালে র‌্যাঙ্কিং চালুর পর সবচেয়ে বেশি বয়সী খেলোয়াড়ের রেকর্ড গড়ে। আগামী পরশু নতুন প্রকাশিত র‌্যাঙ্কিং ধরলে সেরেনার শীর্ষে কাটবে মোট ১৫৬ সপ্তাহ। এএফপি।ঝিনাইদহ জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি আবুল হোসেনকে (৪৮) দুর্বৃত্তরা গতকাল সোমবার দুপুরে বোমা হামলা চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করেছে। তিনি হরিণাকুণ্ডু উপজেলা বিএনপির সভাপতি এবং দৌলতপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ার-ম্যান পদেও দায়িত্বরত ছিলেন।এ হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে জেলাব্যাপী বুধবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে ১৮-দলীয় জোট। এদিকে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের স্বার্থে হরিণাকুণ্ডু পৌর এলাকায় গতকাল সন্ধ্যা ছয়টা থেকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত ১৪৪ ধারা জারি করেছে প্রশাসন। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবুল বসার এ খবর নিশ্চিত করেছেন।পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, ইউপি কার্যালয়ে কাজ সেরে মোটরসাইকেলযোগে নিজ গ্রাম মহারাজপুর রওনা হন আবুল হোসেন। পথে দখলপুর বাজারে সন্ত্রাসীরা বোমা হামলা করলে তিনি রাস্তায় পড়ে যান। তখন কুপিয়ে তাঁর মৃত্যু নিশ্চিত করে হামলাকারীরা পালিয়ে যায়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত লোকজন কিছু বুঝে ওঠার আগেই কয়েক মুহূর্তের মধ্যে ওই হত্যাকাণ্ড ঘটে।এ খবর ছড়িয়ে পড়লে ক্ষুব্ধ বিএনপি সমর্থকেরা হরিণাকুণ্ডু উপজেলা সদরে অবস্থিত আওয়ামী লীগ কার্যালয় ভাঙচুর করে ও বেশ কয়েকটি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান ও বাড়িঘরে আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে বিজিবি, পুলিশ ও র‌্যাব ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নেয়। তবে এলাকায় এখনো উত্তেজনা বিরাজ করছে। নিহতের লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য জেলা সদর হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়। পরে সেই লাশ নিয়ে শহরে মিছিল করেছে বিএনপি সমর্থকেরা।হরিণাকুণ্ডু থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মহিবুল ইসলাম বলেন, সম্ভবত পূর্বশত্রুতার জেরে আবুল হোসেনকে হত্যা করা হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে। শহরে বিজিবি, র‌্যাব ও পুলিশ টহল দিচ্ছে। এ ঘটনায় গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো মামলা হয়নি।আবুল হোসেনের দাফনের পর হত্যা মামলা দায়ের করা হবে বলে পৌর বিএনপি সূত্র জানিয়েছে। উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এম এ মজিদ বলেন, আবুল হোসেন পর পর দুইবার দৌলতপুর ইউপির চেয়ারম্যান নির্বাচিত হন। তিনি স্ত্রী ও তিন ছেলে রেখে গেছেন।জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সাংসদ মসিউর রহমান অভিযোগ করেন, বর্তমান আন্দোলন ব্যাহত করতে আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীরা পরিকল্পিতভাবে আবুল হোসেনের মতো একজন জনপ্রিয় নেতাকে হত্যা করেছে। এই হত্যায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার দাবিতে বুধবার জেলাব্যাপী হরতাল আহ্বান করা হয়েছে।প্রথম ইংলিশ খেলোয়াড় হিসেবে চ্যাম্পিয়নস লিগে ঘড়ির কাঁটা মিনিট পেরোনোর আগেই গোল পেলেন জ্যাক উইলশেয়ার। পরশু অলিম্পিক মার্শেইয়ের বিপক্ষে পরে আরেকটি গোল করে আর্সেনালের জার্সি গায়ে প্রথম জোড়া গোলও পেয়ে গেছেন ২১ বছর বয়সী ফুটবলার। উইলশেয়ারের ৩০ সেকেন্ডের গোলটি চ্যাম্পিয়নস লিগে যেকোনো ইংলিশ ক্লাবের হয়েই দ্বিতীয় দ্রুততম। দ্রুততম গোলটিও এক ‘গানারের’। ২০০২-০৩ মৌসুমে পিএসভি আইন্দহোফেনের বিপক্ষে মাত্র ২০.০৭ সেকেন্ডেই গোল পেয়েছিলেন ব্রাজিলিয়ান জিলবার্তো সিলভা। সে সময় ওটাই ছিল চ্যাম্পিয়নস লিগের দ্রুততম গোল। ২০০৬-০৭ মৌসুমে রিয়াল মাদ্রিদের বিপক্ষে মাত্র ১০.১২ সেকেন্ডেই গোল করে রেকর্ড নতুন করে লেখেন বায়ার্ন মিউনিখের রয় ম্যাকে।ক্ষণে ক্ষণে উত্তেজনা আর প্রতিটি সেশনে নতুন বিস্ময়। টেস্ট ক্রিকেট মেলবোর্নে তিন দিন ধরে নিজেকে মেলে ধরল জাদুকরের মতো। নইলে কে ভেবেছিল দ্বিতীয় দিনে ঘুরে দাঁড়ানো ইংল্যান্ড তৃতীয় দিনেই এভাবে লাগাম তুলে দেবে অস্ট্রেলিয়ার হাতে!কয়েক বছর আগে যখন অ্যাশেজে অস্ট্রেলিয়ার একতরফা রাজত্ব চলত, সে সময় একবার সিডনির মাঠে একটা প্ল্যাকার্ড দেখা গিয়েছিল—‘ইংলিশরা যদি ব্যাটিংয়ে থাকে তাহলে ট্যাক্সিওয়ালাকে অপেক্ষা করতে বলো।’ মানে বেশি সময় লাগবে না, অলআউট হয়ে যাবে একটু পরই। মেলবোর্নে তৃতীয় দিনের জন্য এর চেয়ে মানানসই প্ল্যাকার্ড আর হতে পারে না। প্রথম ইনিংসে অস্ট্রেলিয়ানদের ২০৪ রানে অলআউট করে ৫১ রানের লিড পেয়ে গিয়েছিল অ্যালিস্টার কুকের দল। কিন্তু ব্যাটিংয়ে নেমে নিজেরা গুটিয়ে গেছে মাত্র ১৭৯ রানে! ফলাফল, একই দিনে দ্বিতীয়বার ব্যাটিং করার সুযোগ পেল অস্ট্রেলিয়া। দিন শেষে তাদের বিনা উইকেটে ৩০ রান বলছে মেলবোর্ন যদি আর কোনো বিস্ময় লুকিয়ে না রাখে তাহলে সিরিজে ৪-০ করে ফেলছে মাইকেল ক্লার্কের দল। অথচ দ্বিতীয় দিন শেষে এই অস্ট্রেলিয়াই কী কোণঠাসা ছিল!ইংল্যান্ডের সর্বনাশ হয়েছে দুটি ব্যাটিং ধসে। প্রথম ইনিংসের ৫১ রানের লিডের সঙ্গে দ্বিতীয় ইনিংসে কুক ও কারবেরির উদ্বোধনী জুটিতে আরও ৬৫ রান। ১১৬ রানে এগিয়ে যাওয়া ইংল্যান্ড তখন স্বপ্ন দেখছে প্রতিপক্ষকে রানে চাপা দেওয়ার। কিন্তু ব্যক্তিগত ৫১ রানে কুক ফিরতেই পরিস্থিতির বদল। পিটার সিডল যখন কারবেরিকে এলবিডব্লু করেন, ইংল্যান্ডের রান ৮৬। সেখান থেকে আর ১ রান যোগ হতেই আউট জো রুট ও ইয়ান বেল। বিনা উইকেটে ৬৫ থেকে ৪ উইকেটে ৮৭। এই ৪ উইকেটের তিনটিতেই ভূমিকা আছে জনসনের। কুককে এলবিডব্লু করেছেন, দুর্দান্ত ফিল্ডিংয়ে রানআউট করেছেন রুটকে আর নাথান লায়নের বলে ক্যাচ নিয়েছেন বেলের। অস্ট্রেলিয়ার হয়ে বাকি কাজটুকু করেছেন লায়ন একাই।বেলের পর ফিরিয়েছেন বেন স্টোকস, টিম ব্রেসনান, স্টুয়ার্ট ব্রড ও কেভিন পিটারসেনকে। দেশের মাটিতে প্রথমবারের মতো ইনিংসে ৫ উইকেট নিয়ে শততম উইকেটের মাইলফলক ছুঁয়েছেন অস্ট্রেলিয়ান অফ স্পিনার। এ বছরে এ পর্যন্ত পিটার সিডলের সঙ্গে যৌথভাবে অস্ট্রেলিয়ার সর্বোচ্চ উইকেটশিকারি তিনি (৪২টি)। লায়নের ঘূর্ণির সামনে ইংল্যান্ড শেষ ৫ উইকেট হারিয়েছে মাত্র ৬ রানে! এর মাঝে প্রথম ইনিংসের মতো দ্বিতীয় ইনিংসেও কিছুটা প্রতিরোধের চেষ্টা করেছেন শুধু পিটারসেন (৪৯)।বল হাতে এই কীর্তি গড়ার আগে ব্যাট হাতেও দিনের শুরুতে ইংল্যান্ডকে ভুগিয়েছেন লায়ন। ৯ উইকেটে ১৬৪ রানে দিন শুরু করা অস্ট্রেলিয়াকে হাডিন-লায়নের শেষ জুটি দিয়েছে আরও ৪০ রান, যাতে ১৮ রান লায়নের। জয়ের জন্য ২৩১ রানের লক্ষ্যটাকে দিন শেষে ২০১ রানে নামিয়ে এনেছেন দুই ওপেনার ক্রিস রজার্স ও ডেভিড ওয়ার্নার।মেলবোর্ন কি নতুন কোনো রোমাঞ্চ জাগিয়ে উল্টো কিছু করবে? ১৯৯৬ সালে নতুন পিচ বানানোর পর থেকে এই মাঠে চতুর্থ ইনিংসে ১৮৩ রানের বেশি তাড়া করে জেতেনি কোনো দল! স্টার স্পোর্টস, এএফপি।
টানা প্রায় সাত দিন শ্রমিক অসন্তোষের পর গতকাল শুক্রবার গাজীপুর শিল্পাঞ্চল ছিল শান্ত। জেলার কোথাও শ্রমিক অসন্তোষের ঘটনা ঘটেনি। তবে বিভিন্ন শিল্পকারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকায় বিজিবি প্রত্যাহার করে নেওয়া হয়েছে।গাজীপুর শিল্প পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকার শিল্পকারখানার শ্রমিকেরা গতকাল শুক্রবার যথারীতি সকালে কাজে যোগদান করেছেন। আবার অনেক কারখানায় গতকাল ছিল সাপ্তাহিক ছুটি। গাজীপুর সদর উপজেলার টঙ্গী, ভোগড়া, বাসনসড়ক, চান্দনা চৌরাস্তা, কোনাবাড়ি, কালিয়াকৈর উপজেলার মৌচাক, তেলিরচালা ও চন্দ্রা এলাকার কারখানাগুলোতে শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করেছে। যেসব কারখানার শ্রমিকেরা গত কয়েক দিন ধরে বিক্ষোভ ও ভাঙচুর করে আসছে, সেসব কারখানার সামনে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। গত কয়েক দিনের হামলা ও ভাঙচুরের শিকার অনেক কারখানায় এখনো কাজ শুরু হয়নি।গতকাল সকালেই জেলা থেকে বিজিবি প্রত্যাহার করে প্রশাসন। জেলা প্রশাসনের সূত্র জানিয়েছে, ফের শ্রমিক অসন্তোষ সৃষ্টি হলে তাৎক্ষণিক বিজিবি মোতায়েন করা হবে। কালিয়াকৈর উপজেলার চন্দ্রা পল্লী বিদ্যুৎ এলাকার ডিবাইন গ্রুপের সহকারী মহাব্যবস্থাপক তৌহিদুল ইসলাম জানান, নতুন মজুরি বোর্ড কর্তৃক শ্রমিকদের বেতনকাঠামো ঘোষিত হলে অন্য সব কারখানার মতো একসঙ্গে তাঁরাও শ্রমিকদের বেতন বৃদ্ধি করবেন। তবে তিনি শ্রমিকদের ধ্বংসাত্মক কাজ থেকে বিরতি থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন।কালিয়াকৈর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক জানান, গতকাল কোথাও কোনো শ্রমিক অসন্তোষের খবর পাওয়া যায়নি। তার পরও বিভিন্ন এলাকায় অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন ছিল। গাজীপুর শিল্প পুলিশের সহাকারী পুলিশ সুপার মোশাররফ হোসেন জানান, গাজীপুরের কোথাও শ্রমিক অসন্তোষ হয়নি। খোলা কারখানাগুলোতে শ্রমিকেরা শান্তিপূর্ণভাবে কাজ করেছেন। নিরাপত্তার জন্য মহাসড়কে পুলিশ টহল দিয়েছে।আগামী বৃহস্পতিবার সারা দেশে বিক্ষোভ সমাবেশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। পরদিন শুক্রবার হরতালে নিহত ব্যক্তিদের স্মরণে গায়েবানা জানাজার আয়োজন করবে দলটি। গতকাল সোমবার রাতে বিএনপির চেয়ারপারসনের গুলশানের কার্যালয়ে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এসব কর্মসূচি পালনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে দলীয় একটি সূত্র জানিয়েছে।রাত সাড়ে আটটা থেকে ১০টা পর্যন্ত অনুষ্ঠিত এ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য মওদুদ আহমদ, খন্দকার মোশাররফ হোসেন, আবদুল মঈন খান প্রমুখ।১৮-দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ কর্মসূচির দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার রাতে টঙ্গীর মিলগেট এলাকায় বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কর্মীদের সংঘর্ষে পথচারীসহ কমপক্ষে ১০ জন আহত হয়েছেন। এঁদের মধ্যে গুলিবিদ্ধ সাতজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, রাত আটটার দিকে বিএনপি-জামায়াতের অবরোধকারীরা মিলগেট এলাকায় মহাসড়কে ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। এরপর সড়কে চলাচলরত একটি অটোরিকশায় আগুন দেন। এ সময় স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁদের বাধা দিলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ শুরু হয়। এ ঘটনায় সাতজন গুলিবিদ্ধসহ ১০ জন আহত হন। দ্রুত তাঁদের উদ্ধার করে টঙ্গী সরকারি হাসপাতাল ও আবেদা মেমোরিয়াল হাসপাতালে নেওয়া হয়।হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, গুলিবিদ্ধ সাতজনকেই কর্তব্যরত চিকিৎসকেরা ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠিয়েছেন। গুলিবিদ্ধরা হলেন যুবলীগের তিনজন; আওয়ামী লীগের একজন এবং পথচারী তিনজন। টঙ্গী মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ইসমাইল হোসেন ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।মালয়েশিয়াকে উড়িয়ে দিয়েই এশিয়া কাপ শুরু করল বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ ক্রিকেট দল। কাল আবুধাবিতে মালয়েশিয়াকে ৫০ রানে অলআউট করে ৩৯.৪ ওভার হাতে রেখে বাংলাদেশের যুবারা জিতেছে ৯ উইকেটে।  টস জিতে ব্যাটিং নেওয়া মালয়েশিয়া টিকতেই পারেনি বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দলের দুই বাঁহাতি পেসার আবু হায়দার ও মুস্তাফিজুর রহমানের সামনে, অলআউট হয়েছে ২৫.২ ওভারে।জাতীয় লিগে ঢাকা মহানগরের হয়ে তিনটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ খেলা হায়দার ৮ ওভারে ৮ রান দিয়ে নিয়েছেন ৫ উইকেট। দশম ও দ্বাদশ ওভারে দুদুবার তিন বলের মধ্যে ২টি করে উইকেট নিয়েছেন এই পেসার। ১৭ রানে ২ উইকেট নিয়েছেন মুস্তাফিজ, তাঁরও উইকেট দুটি একই ওভারে নেওয়া। এ ছাড়া লেগ স্পিনার জুবায়ের ৭ রানে ২টি ও বাঁহাতি স্পিনার নিহাদুজ্জামান ১০ রানে ১ উইকেট নিয়েছেন।ওপেনার জাকির হাসানকে (১৪) হারিয়ে বাংলাদেশ অনূর্ধ্ব-১৯ দল জয় তুলে নেয় ১০.২ ওভারেই। সাদমান ইসলাম ২৫ ও জয়রাজ শেখ ১০ রানে অপরাজিত ছিলেন। আজ দ্বিতীয় ম্যাচে বাংলাদেশের প্রতিপক্ষ আফগানিস্তান।
বাংলাদেশের তৈরি পোশাক খাতের কর্মপরিবেশের উন্নয়নে দুই কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার দেবে নেদারল্যান্ডস। কানাডা ও যুক্তরাজ্যের অংশীদারিতে নেদারল্যান্ডসের এ অর্থায়ন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) মাধ্যমে পাঁচ বছর মেয়াদে বাস্তবায়িত হবে। ২৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে নেদারল্যান্ডসের বৈদেশিক বাণিজ্য ও উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী লিলিয়েন প্লাউমেন ও আইএলওর মহাপরিচালক গাই রাইডার চুক্তিতে সই করেন।জানতে চাইলে নিউইয়র্ক থেকে পররাষ্ট্রসচিব মো.শহীদুল হক গতকাল বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী দীপু মনির সঙ্গে নেদারল্যান্ডসের মন্ত্রী লিলিয়েন প্লাউমেনের বৈঠকের পর চুক্তিটি সই হয়। নেদারল্যান্ডসের এ সহযোগিতা দেওয়া হবে কারখানার নিরাপত্তা ও শ্রমিক অধিকার রক্ষার বিকাশে। নতুন সহযোগিতার প্রক্রিয়ার বাস্তবায়ন আগামী ৯ অক্টোবর থেকে শুরু হবে।পররাষ্ট্র সচিব জানান, পোশাক কারখানায় অগ্নিকাণ্ড ও কাঠামোগত নিরাপত্তা সুরক্ষার পাশাপাশি শ্রমিক অধিকার রক্ষায় এ পর্যন্ত নেওয়া সরকারের ভূমিকার প্রশংসা করেছেন নেদারল্যান্ডসের উন্নয়ন সহযোগিতা মন্ত্রী। বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে পরিস্থিতির উন্নয়নে জাতীয় প্রতিষ্ঠানগুলোর সার্মথ্য বাড়ানোর বিষয়টি উল্লেখ করা হলে তাতে একমত পোষণ করে নেদারল্যান্ডস।ন্যূনতম মজুরি নিয়ে পোশাক শ্রমিকদের চলমান অসন্তোষের বিষয়টিতে দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে পররাষ্ট্রসচিব বলেন, বিষয়টি নিয়ে আলোচনা হয়েছে। আলোচনার মাধ্যমে এ বিষয়টি সুরাহার ব্যাপারে তাঁরা মত দেন।নেদারল্যান্ডস পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, বাংলাদেশকে দেওয়া দুই কোটি ৩০ লাখ মার্কিন ডলার পোশাকশিল্পের সঙ্গে যুক্ত নানা কার্যক্রমে ব্যয় হবে। এসব কার্যক্রমের মধ্যে রয়েছে কারখানার অগ্নিকাণ্ড ও কাঠামোগত নিরাপত্তা জোরদারের পাশাপাশি স্থানীয়ভাবে ট্রেড ইউনিয়ন কার্যক্রম শক্তিশালীকরণ। এ প্রক্রিয়ার অংশ হিসেবে কারখানা পরিদর্শনের বিষয়টিতে জোর দেওয়া হবে। এ ছাড়া কারখানায় দুর্ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করবে আইএলও। প্রশিক্ষণের মূল লক্ষ্য হবে শ্রমিকদের কাজে ফিরতে উপযোগী করে তোলা।এদিকে আইএলওর ওয়েবসাইটে বলা হয়েছে, কর্মসূচিতে শ্রমিকদের পাশাপাশি তাঁদের পরিদর্শক ও ব্যবস্থাপকদের কর্মদক্ষতা বাড়াতে প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। কারখানার সহিংসতা রোধসহ নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে তাঁদের সামর্থ্য বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেওয়া হবে।চুক্তি সইয়ের আগে লিলিয়েন প্লাউমেন আশা প্রকাশ করেন, খুব শিগগিরই বাংলাদেশের কারখানায় কর্মপরিবেশের উন্নতি হবে। বাংলাদেশের পোশাকশিল্পের সমস্যা দূর করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য লিলিয়েন প্লাউমেনকে ধন্যবাদ জানান দীপু মনি।ঐতিহাসিক লালবাগ কেল্লা পার হয়ে পশ্চিমে খানিকটা এগিয়ে গেলেই চৌরাস্তার মোড়। হাতের বাঁয়ে অর্থাৎ দক্ষিণ দিকের সরু গলিটির নাম আতিশখানা লেন। তবে বর্তমানে নামটি একটু বদলে গেছে। ঢাকার ইতিহাসবিষয়ক বইপুস্তকে আতিশখানা বলে উল্লেখ থাকলেও এলাকার লোকমুখে এবং বাড়ি বা দোকানের সাইনবোর্ডে লেখা ‘আতশখানা’।লালবাগ রোডের চৌরাস্তার ওই মোড় থেকে দক্ষিণ দিকে এই সরু গলিটি এঁকেবেঁকে অদূরে গিয়ে মিলেছে জগন্নাথ সাহা রোডের সঙ্গে। আতিশখানা রোডটি রাজধানী ঢাকার প্রাচীনতম জনবসতিগুলোর একটি। সুবাদার ইসলাম খাঁর সময় রাজধানী ঢাকার দক্ষিণ-পশ্চিম পাশে জনবসতির যে সম্প্রসারণ ঘটেছিল, আতিশখানা ছিল তার অন্তর্ভুক্ত।এলাকার নাম কেন আতিশখানা হলো তা নিয়ে ইতিহাসবিদদের মধ্যে মতান্তর রয়েছে। কেউ কেউ মনে করেন, এখানে জরথুস্ত্রের অনুসারী পার্সি সম্প্রদায়ের বসবাস ছিল। তারা অগ্নি-উপাসক। ফার্সি ‘আতিশ’ শব্দের অর্থ আগুন। সেই থেকে আতিশখানা নামকরণ। হাকিম হাবিবুর রহমান তাঁর আসুগদান-ই-ঢাকা বইতে বলেছেন, এখানে একটি বিশেষ ধরনের পাকা কবরও ছিল। পরে তা চাপা পড়ে যায়। সেখানে ঘরবাড়ি নির্মিত হয়। আবার ১৯২৭ সালে এখানে খনন করে একটি পারসিকদের উপাসনার অগ্নিকুণ্ডের অস্তিত্বও পাওয়া যায় বলে উল্লেখ করেছেন ঐতিহাসিক আজিমুশান হায়দার।তবে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক আবদুল করিমের মতে, এ ধারণা সঠিক নয়। তিনি তাঁর মুঘল রাজধানী ঢাকা বইতে উল্লেখ করেছেন, আতিশখানা গড়ে উঠেছিল মোগল আমলেই। তিনি সুবাদার ইসলাম খাঁর সময় রাজধানী ঢাকার যে সম্প্রসারণ ঘটেছিল, তার একটি তালিকা দিয়েছেন ওই বইতে। সেই তালিকার ক্রমানুসারে ৩১ নম্বরে রয়েছে আতিশখানা। এটি দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে সম্প্রসারিত এলাকা। তিনি মনে করেন, এখানে হয়তো মোগলদের অস্ত্রাগার ছিল। এখানে গোলাবারুদ তৈরি হতো। সেই থেকে আতিশখানা নামের উৎপত্তি হতে পারে। ঐতিহাসিক মুনতাসীর মামুনও এই মতের সমর্থক। তিনি তাঁর ঢাকা: স্মৃতি বিস্মৃতির নগরী (প্রথম খণ্ড) বইতে লিখেছেন ‘অধ্যাপক করিমের যুক্তিই যুক্তিযুক্ত। কারণ, ঢাকায় জানামতে, জরথুস্ত্র অনুসারীদের আধিক্য কখনো তেমন ছিল না। ফলে তাদের কর্মকাণ্ডের কারণে একটি অঞ্চলের নামকরণ সম্ভব নয়।’মোগল আমলের গুরুত্বপূর্ণ এই এলাকাটি এখন একটি ছোট সরু গলি। দুই পাশে গায়ে গায়ে লাগানো ঘরবাড়ি। গলিতে ঢোকার মুখেই দেখা গেল পুরোনো ইমারত ভেঙে নতুন বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে। পুরো গলিতে পুরোনো বাড়ি আছে তিনটি। এর মধ্যে পূর্ব পাশের ২০ নম্বর বাড়িটিই সবচেয়ে পুরোনো। এটি দ্বিতল। নিচের তলায় বারান্দার ছাদের সঙ্গে ঝালরের মতো করে লাগানো চমৎকার কাঠের নকশা। ওপরের বারান্দা ঢালাই লোহার নকশা করা রেলিং দিয়ে ঘেরা। এটি হয়তো ব্রিটিশ আমলে নির্মিত। অন্য দুটি এত প্রাচীন নয়। বলতে গেলে এই বাড়িটি ছাড়া পুরোনো কালের তেমন কোনো নিদর্শন নেই আতিশখানা লেনে। আতিশখানা লেন আগে বেশ বড়ই ছিল। নাজির হোসেনের কিংবদন্তির ঢাকা বইতে দেখা যাচ্ছে, বিষ্ণু চরণ দাস স্ট্রিট থেকে শেখ সাহেব বাজারের একটি অংশ নিয়ে পশ্চিমে খান মুহম্মদ মৃধা মসজিদ পর্যন্ত ছিল এলাকাটির বিস্তৃতি। এখন শুধু ওই সরু গলিটিই টিকে আছে আতিশখানা লেন নামে। সরু হলেও দেখা গেল অন্যান্য এলাকার চেয়ে ঢের পরিচ্ছন্ন। ঢাকার এসব আঁকাবাঁকা, সর্পিল, সংকীর্ণ, ছায়াময় অলিগলিতে মিশে থাকে কেমন যেন এক রহস্যময়তা। যেন পুঞ্জীভূত হয়ে আছে দীর্ঘ দিনের উত্থান-পতন, আনন্দ-বেদনার অভিব্যক্তি।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন সহ-উপাচার্য গতকাল বুধবারও অবরুদ্ধ ছিলেন। উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার দাবিতে আট দিন ধরে তাঁদের অবরুদ্ধ করে রেখেছেন শিক্ষক-শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারী ঐক্য ফোরামের ব্যানারে আন্দোলনকারী শিক্ষকেরা।প্রশাসনিক ভবনে গতকাল বিকেলে গিয়ে দেখা যায়, উপাচার্যের কক্ষে দায়িত্বপ্রাপ্ত সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এম এ মতিন বিশ্রাম নিচ্ছেন। সহ-উপাচার্য (প্রশাসন) আফসার আহমদ পাশের কক্ষে ঘুমাচ্ছিলেন।এম এ মতিন জানান, উপাচার্য প্যানেল নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার ব্যাপারে উপাচার্য আনোয়ার হোসেন এখনো কিছু জানাননি। তবে শিগগিরই এ সমস্যার সমাধান হবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি।এদিকে নিজেদের দাবিতে অনড় থাকার কথা নিশ্চিত করেছেন ফোরামের আহ্বায়ক মুহাম্মদ কামরুল আহসান।সাংবাদিক নেতারা বলেছেন, নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকতা পেশা এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি ঝুঁকিপূর্ণ। প্রতিনিয়ত সাংবাদিকেরা ঝুঁকি নিয়ে দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। সাংবাদিকতার মধ্যে রাজনীতি আর মিডিয়া মালিকদের প্রভাব থাকায় দিন দিন সাংবাদিকতা কঠিন হয়ে যাচ্ছে। নারায়ণগঞ্জে সাংবাদিকদের মধ্যে ঐক্য স্থাপনেরও তাগিদ দিয়েছেন তাঁরা।গতকাল শনিবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত নারায়ণগঞ্জ শহরের চাষাঢ়া বালুর মাঠ এলাকায় অবস্থিত নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকম মিলনায়তনে ‘সাম্প্রতিক প্রেক্ষাপট ও ঝুঁকিপূর্ণ সাংবাদিকতা’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে বক্তারা এসব কথা বলেন। বৈঠক সঞ্চালনায় ছিলেন নিউজ নারায়ণগঞ্জ ডটকমের এডিটর ইন চিফ শাহজাহান শামীম। স্বাগত বক্তব্য দেন হেড অব নিউজ শরীফ সুমন। অনুষ্ঠান সমন্বয়ের দায়িত্বে ছিলেন নির্বাহী সম্পাদক তানভীর হোসেন।গোলটেবিল বৈঠকে অংশ নেন নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাব ও বাংলাদেশ সংবাদ সংস্থার (বাসস) উপ-বার্তাপ্রধান কবি হালিম আজাদ, নিউজ পেপারস ওনার্স অ্যাসোসিয়েশন নারায়ণগঞ্জের সভাপতি ও দৈনিক ডান্ডিবার্তার সম্পাদক হাবিবুর রহমান, দৈনিক খবরের পাতার সম্পাদক মাহাবুবুর রহমান প্রমুখ।
বল পায়ে লিওনেল মেসি আর তাঁকে ঘিরে আছেন প্রতিপক্ষের একদল ডিফেন্ডার। ফুটবল অনুরাগীদের অনেক চেনা দৃশ্য। কত ফুটবল রূপকথার জন্ম হয়েছে এমন দৃশ্য থেকে। কিন্তু এভাবে পুলিশ আর নিরাপত্তাকর্মী বেষ্টিত লিওনেল মেসি (ওপরে বাঁয়ের ছবি), এই দৃশ্য তো কিছুটা অকল্পনীয়ই। বিশ্বের কঠিন থেকে কঠিনতম ডিফেন্ডারদের যিনি ফাঁকি দিতে পারেন চোখের পলকে, সেই মেসি ফাঁকি দিতে পারলেন না স্পেনের কর কর্মকর্তাদের।ফিফা বর্ষসেরা ফুটবলারের আয়কর বিবরণীতে গরমিল। ২০০৬ থেকে ২০০৯ সাল পর্যন্ত প্রায় ৪০ লাখ ইউরো কর ফাঁকির অভিযোগ উঠেছিল মেসি ও তাঁর বাবা হোর্হে মেসির বিরুদ্ধে। অভিযোগটা প্রথম ওঠার পর গত জুলাইতে অস্বীকার করেছিলেন জেনেবুঝে কোনো অপরাধ করার কথা, ‘এই বিষয়গুলো আমি দেখাশোনা করি না, আমার বাবাও করেন না। এ জন্য আমাদের আইনজীবীরা আছেন, উপদেষ্টারা আছেন। তাঁরাই সব দেখেন। আমরা তাঁদের বিশ্বাস করি। আশা করি, এর সমাধান হয়ে যাবে।’ অভিযোগ অস্বীকার করলেও এরই মধ্যে জরিমানাসহ স্পেনের কর বিভাগে ৫০ লাখ ইউরো জমা দিয়েছেন। তাতে অবশ্য কর ফাঁকির মামলা থেকে রেহাই মেলেনি। ফলাফল, আদালতের চৌহদ্দিতে পিতা-পুত্র। গতকাল ছিল দুজনের আদালতে হাজিরার দিন। বার্সেলোনার গাভার একটি আদালতে পুলিশঘেরা অবস্থায় হাজিরা দিয়ে ফিরে গেছেন মেসি। সঙ্গে ছিলেন ভাই রদ্রিগো। এর কিছুক্ষণ আগে গিয়েছিলেন তাঁর বাবা হোর্হেও (ডানের ছবি)। বিচারকক্ষ রুদ্ধদ্বার ছিল বলে আসলে কী ঘটেছে, সেটা জানতে পারেনি কোনো সংবাদমাধ্যম। মুখে কুলুপ এঁটে রেখেছিলেন বাবা-ছেলে দুজনই। তবে তাঁদের আইনজীবী জানিয়েছেন, দুজনই জেনেশুনে প্রতারণা করেননি বলে প্রমাণ করতে পেরেছেন। আয়করের ঝামেলা মিটিয়েফেলার ব্যাপারে তাঁদের আন্তরিকতাটুকুও বোঝাতে পেরেছেন।ফেরার পথে বার্সেলোনার আর্জেন্টাইন ফরোয়ার্ডের মুখে হাসি আর ‘থাম্বস আপ’ দেখানো একটা বার্তা অবশ্য দিয়েছে। আদালতকক্ষে বিব্রতকর কিছু ঘটেনি, বরং আপাতত কিছুটা নির্ভারই তিনি। এএফপি।সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব (পিপিপি) আইন, ২০১৩-এর খসড়ায় নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা। পাশাপাশি কুমিল্ল্লা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইনের খসড়া চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। নীতিগত অনুমোদন দেওয়া হয়েছে খুলনা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় আইন ও পার্বত্য চট্টগ্রাম উন্নয়ন বোর্ড আইনের খসড়া।গতকাল সচিবালয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ অনুমোদন দেওয়া হয়।পিপিপি আইনের খসড়া প্রসঙ্গে মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, প্রস্তাবিত আইনে চুক্তির মেয়াদ, বাতিল-কার্যকর, বিরোধ নিষ্পত্তি কীভাবে হবে তা উল্লেখ রয়েছে। আইনে সাতটি অধ্যায় ও ৬৮টি ধারা সন্নিবেশ করা হয়েছে। যেখানে বেসরকারি বিনিয়োগ লাভজনক হবে না, সেখানেই পিপিপির অধীনে কাজ হয়ে থাকে। কারণ, পিপিপির মাধ্যমে আয় হতে হবে। নতুবা বেসরকারি বিনিয়োগকারীরা আসবেন না।প্রস্তাবিত আইন অনুযায়ী ব্যক্তিগতভাবে যে কেউ সরকারের কাছে যেকোনো প্রস্তাব দিতে পারবেন উল্লেখ করে সচিব বলেন, বেসরকারি পর্যায়ে একটি লিংক প্রজেক্ট করে দেবে সরকার, যা দ্রুত বাস্তবায়ন করা যাবে। সর্বোপরি জনস্বার্থে যেকোনো চুক্তি সরকার বাতিল করতে পারবে।দেশের পঞ্চম কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় খুলনায় প্রতিষ্ঠা করা হবে জানিয়ে মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞা বলেন, এ-সংক্রান্ত প্রস্তাবে নীতিগত অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা।মন্ত্রিপরিষদ সচিব বলেন, ২০১১ সালে প্রধানমন্ত্রী খুলনা সফরের সময় এই বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার অঙ্গীকার করেছিলেন। নতুন এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পর এখান থেকে পাস করে শিক্ষার্থীরা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের আওতায় মাঠ পর্যায়ে ছয় মাসের ইন্টার্নশিপের সুযোগ পাবেন। এ ছাড়া সরকার মনোনীত দুজন অগ্রণী কৃষি উদ্যোক্তা এই কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে সিন্ডিকেট সদস্য হিসেবে থাকবেন।বর্তমানে ময়মনসিংহ, গাজীপুর, ঢাকা ও সিলেটে চারটি কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে। খুলনায় একটি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ও রয়েছে।এ ছাড়া প্রোভিসির পদ নতুন করে সৃষ্টি করতে মন্ত্রিসভার বৈঠকে ‘কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন, ২০১৩’ এবং ‘বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) আইন, ২০১৩’ খসড়ার চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হয়।এ বিষয়ে সচিব জানান, এতে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়েই প্রোভিসির পদ সৃষ্টি হলো। আর বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি নাম হবে ইউনিভার্সিটি অব বরিশাল।একটি মুঠোফোনের সেট চুরির অভিযোগ এনে দুই বন্ধু তাঁদের এক বন্ধুকে ছুরিকাঘাতে হত্যা করেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। গত মঙ্গলবার বিকেলে মানিকগঞ্জ পৌর এলাকার শাইলীপাড়া গ্রামে এই ঘটনা ঘটে। নিহত মারুফ হাসান ওরফে নয়ন (১৮) পৌর এলাকার বান্দুটিয়া গ্রামের মৃত মজিদ মিয়ার ছেলে। গত বছর শহরের মডেল উচ্চবিদ্যালয় থেকে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিয়ে এক বিষয়ে অনুত্তীর্ণ হন মারুফ। এবার তাঁর ওই এক বিষয়ে পরীক্ষা দেওয়ার কথা ছিল।হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় মারুফের চাচা ফরিদ আল-মাহমুদ বান্দুটিয়া গ্রামের হূদয় হোসেন ও রাকিব হোসেনকে আসামি করে মানিকগঞ্জ সদর থানায় হত্যা মামলা করেছেন।প্রত্যক্ষদর্শীর বরাত দিয়ে মারুফের চাচা আবদুল্লাহ আল-মামুন বলেন, গত মঙ্গলবার বিকেলে পাশের শাইলীপাড়ায় মারুফের সঙ্গে হূদয় ও রাকিবের বাগিবতণ্ডা হয়। হূদয় অভিযোগ করেন, মারুফ তাঁর মুঠোফোন চুরি করেছেন। একপর্যায়ে হূদয় মারুফের বুকে ধারালো ছুরি দিয়ে আঘাত করেন। মারুফ লুটিয়ে পড়লে হূদয় ও রাকিব পালিয়ে যান। পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে মারুফের মৃত্যু হয়।সদর থানার ওসি রিজাউল হক ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের ৩৭ ব্যাচের ইংরেজি বিভাগের ছাত্র জুবায়ের আহমদ হত্যার বিচারের দাবিতে গতকাল শনিবার ক্যাম্পাসে মানববন্ধন, বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছেন শিক্ষার্থীরা। এ ছাড়া তাঁরা চার দফা দাবিতে প্রশাসনের কাছে স্মারকলিপি পেশ করেন।গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ‘আমরা জুবায়েরের বন্ধুরা’ ব্যানারে অমর একুশে ভাস্কর্যের পাদদেশে মানববন্ধন করার পর বিক্ষোভ মিছিল বের করা হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সমাবেশ শেষে তাঁরা চার দফা দাবিতে সহ-উপাচার্য (শিক্ষা) এম এ মতিনের কাছে সঞ্চারকলিপি পেশ করেন। দাবিগুলো হচ্ছে রাষ্ট্রীয় আইনে দ্রুত জুবায়ের হত্যার বিচারপ্রক্রিয়া শেষ করা, ক্যাম্পাসে ৯ জানুয়ারির মধ্যে জুবায়েরের খুনিদের নাম ও ছবিসহ পোস্টার সাঁটানো, পূর্ণাঙ্গ চিকিত্সাকেন্দ্র নির্মাণ ও ক্যাম্পাসের পদার্থবিজ্ঞান ভবন থেকে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল পর্যন্ত সড়কের নাম জুবায়ের সরণি করা।
রাজধানীর হাজারীবাগে জুয়ার আসর বসা এক বাসা থেকে পুলিশের এক সহকারী উপপরিদর্শকসহ (এএসআই) ১৪ জনকে আটক করেছে র‌্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র‌্যাব)-২। জুয়া খেলার অপরাধে তাঁদের মধ্যে একজনকে তিন মাসের এবং ১২ জনকে ১৫ দিনের করে কারাদণ্ড দেন র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত।আটক হওয়া ধানমন্ডি থানার এএসআই মাইনুল ইসলামকে ওই থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে হাজারীবাগের বাড্ডানগরের এক বাসা থেকে তাঁদের আটক করা হয়।র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালতের ম্যাজিস্ট্রেট আনোয়ার পাশা বলেন, মো. রওশন নামের এক ব্যক্তি মাসে আট হাজার টাকায় ওই বাসা ভাড়া নিয়ে জুয়ার আসর বসানোসহ বিভিন্ন ধরনের অপরাধ করছিলেন। তাই তাঁকে তিন মাসের সাজা দেওয়া হয়েছে। ওই বাসা থেকে দেড় লাখ টাকা ও কয়েকটি ইয়াবা বড়ি জব্দ করা হয়। ওই টাকা বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে।এএসআই মাইনুলের বিষয়ে জানতে চাইলে র‌্যাবের একজন কর্মকর্তা বলেন, তিনি কী কারণে ওই বাসায় গিয়েছিলেন, তা জানা যায়নি।যোগাযোগ করা হলে ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাসুদ করিম বলেন, ‘তিনি (মাইনুল) ব্যক্তিগত পাওনা টাকা আনার জন্য ওই বাড়িতে গিয়েছিলেন। বিষয়টি আরও গভীরভাবে খতিয়ে দেখব।’জামায়াতে ইসলামীর নায়েবে আমির দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের প্রথম সাক্ষী মাহবুবুল আলম হাওলাদারের পিরোজপুরের গ্রামের বাড়িতে গতকাল সোমবার হামলা ও ভাঙচুর করেছেন হরতাল-সমর্থকেরা।বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ৬০ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিনে জেলার জিয়ানগর উপজেলার পারেরহাট ইউনিয়নের টেংরাখালী গ্রামে এ ঘটনা ঘটে। মাহবুবুল আলম জিয়ানগর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার এবং সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে স্থানীয় থানায় করা মামলার বাদী। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে গত ২৮ ফেব্রুয়ারি সাঈদীকে মৃত্যুদণ্ডাদেশ দিয়েছেন আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১।মাহবুবুল আলম জানান, সকাল ১০টার দিকে তিনি বাড়িতে বসে খবর দেখছিলেন। সামনের রাস্তায় শোরগোল শুনে দেখেন, দু-আড়াই শ লোক তাঁর বাড়ির দিকে আসছে। তিনি স্ত্রীকে দরজা-জানালা আটকাতে বলেন। ওই লোকেরা বাড়ির সামনে জড়ো হয়ে তাঁকে উদ্দেশ করে গালিগালাজ করে এবং বলতে থাকে আজকে মাহবুবকে জবাই করতে হবে। তারা দরজা-জানালা ধাক্কাতে থাকে। একপর্যায়ে ঘরের সামনের বাঁ পাশের জানালা ভেঙে বেশ কয়েকজন ঘরে ঢোকে। টের পেয়ে তিনি মাচায় আশ্রয় নেন। এর পর হরতাল-সমর্থকেরা ঘরের টেলিভিশন, আসবাবের ব্যাপক ক্ষতি করেন। যাওয়ার সময় তাঁরা বাড়ির টিউবওয়েল ও শৌচাগার ভেঙে ফেলেন।মাহবুবুলের বাড়িতে হরতাল-সমর্থকদের ভাঙচুরের অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা বিএনপির সভাপতি গাজী নুরুজ্জামান বলেন, বিএনপি বা ১৮-দলীয় জোটের কোনো নেতা-কর্মী এই ভাঙচুরের সঙ্গে জড়িত নন। জিয়ানগরের ইন্দুরকানী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাছির উদ্দিন মল্লিক জানান, পুলিশের বরিশাল বিভাগের ডিআইজি আবদুর রহিম, পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক এ কে এম শামিমুল হক সিদ্দিকী ও পুলিশ সুপার এস এম আক্তারুজ্জামান দুপুরে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।এস এম আক্তারুজ্জামান বলেন, হামলার খবর পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে মাহবুবুল আলমের বাড়িতে পুলিশ পাঠিয়ে নিরাপত্তাব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে।সাঈদীর বিরুদ্ধে একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধকালে হত্যা ও লুটপাটের অভিযোগ এনে মাহবুবুল ২০০৯ সালের ৩১ আগস্ট পিরোজপুরের জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিমের আদালতে মামলা করেন। ওই বছরের ৮ সেপ্টেম্বর তিনি বাদী হয়ে সাঈদীর বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে ইন্দুরকানি থানায় মামলা করেন। তিনি ২০১০ সালের ২০ জুলাই মানবতাবিরোধী অপরাধ তদন্ত সংস্থার কাছে অভিযোগ দাখিল করেন।আ.লীগ কার্যালয়ে ভাঙচুর: সকালে নাজিরপুর উপজেলার খেজুরতলা, বাবুর হাট, রঘুনাথপুরে আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে ভাঙচুর ও কয়েকজন নেতা-কর্মীকে মারধর করেন হরতাল-সমর্থকেরা। দুপুর ১২টার দিকে আওয়ামী লীগের কর্মীরা শ্রীরামকাঠি ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর করেন। সকালে হরতাল-সমর্থকেরা পিরোজপুর-নাজিরপুর সড়কের কদমতলা ও ভৈরমপুরে সেতুর ফিশপ্লেট তুলে ফেললে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।পিরোজপুর শহরতলির ভাইজোড়ায় আওয়ামী লীগের কার্যালয়ও ভাঙচুর হয়। বেলা ১১টার দিকে শহরের পুরোনো বাসস্ট্যান্ড এলাকায় পুলিশের সঙ্গে হরতালকারীদের সংঘর্ষ হয়। সন্ধ্যায় পিরোজপুরে দুই প্লাটুন বিজিবি মোতায়েন করা হয়েছে।১৮-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীরা গতকাল বুধবার ঢাকার চারপাশের মহাসড়কগুলোতে কমপক্ষে ৩৩টি যানবাহন ভাঙচুর ও পাঁচটিতে অগ্নিসংযোগ করে অবরোধ করেন। পুলিশ বাধা দিতে গেলে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ, আড়াইহাজার ও সোনারগাঁ, ঢাকার সাভার ও নবাবগঞ্জ, মানিকগঞ্জ এবং গাজীপুরের টঙ্গীতে অবরোধকারীদের সঙ্গে সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এতে কমপক্ষে ১৩৫ নেতা-কর্মী আহত হন। পুলিশ ১৫ জনকে আটক ও ৩০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে।ঢাকা-চট্টগ্রাম, টাঙ্গাইল, ময়মনসিংহ, মাওয়া, আরিচা ও সিলেট মহাসড়কে দূরপাল্লার যানবাহন চলেনি। বাস, ব্যক্তিগত গাড়ি, সিএনজিচালিত অটোরিকশা, হিউম্যান হলার, রিকশা চললেও সংখ্যা ছিল খুব কম।প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের বরাত দিয়ে অবরোধের খবর জানাচ্ছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক ও প্রতিনিধিরা:নারায়ণগঞ্জ: রূপগঞ্জের যাত্রামুড়া, ভুলতা, গাউছিয়া, মুড়াপাড়া, গোলাকান্দাইল, মৈকুলী ও বিশ্বরোড এলাকাসহ নয়টি স্থানে গতকাল পুলিশ, আওয়ামী লীগ ও বিএনপির ত্রিমুখী সংঘর্ষ, ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ায় কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। ভাঙচুর ও অগ্নি-সংযোগ করা হয়েছে বেশ কয়েকটি যানবাহনে। বিএনপির নেতা-কর্মীরা গোলাকান্দাইল আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর করেন। আওয়ামী লীগের কর্মীরা ভাঙেন বিএনপির এক কর্মীর দোকান।যুবদলের কেন্দ্রীয় কমিটির আন্তর্জাতিকবিষয়ক সম্পাদক নজরুল ইসলাম আজাদ বলেন, সংঘর্ষের সময় পুলিশের গুলিতে তাঁদের পাঁচ কর্মী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।সোনারগাঁ (নারায়ণগঞ্জ): সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁ উপজেলার মেঘনাঘাট ও মোগড়াপাড়া চৌরাস্তায় পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। এতে উভয় পক্ষের ৬০ জন আহত হন। মেঘনাঘাটে নেতা-কর্মীরা কমপক্ষে ২৫টি যানবাহন ভাঙচুর করেন। মোগড়াপাড়ায় পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান পুড়িয়ে দেন।সাভার: সকাল সাড়ে সাতটার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সাভার পৌর বাজারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক অবরোধের সময় ইটপাটকেল ছুড়লে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। নয়টার দিকে মহাসড়কের ফুলবাড়িয়া এলাকায় অবরোধে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবারের গুলি ছুড়ে নেতা-কর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সকাল পৌনে ১০টার দিকে তাঁরা সাভার থানা বাসস্ট্যান্ডে দুটি কাভার্ড ভ্যান ভাঙচুর করেন।মানিকগঞ্জ: বেলা ১১টার দিকে শহরের শহীদ সরণি সড়কে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। নেতা-কর্মীরা ওয়ারলেছ গেট এলাকায় গিয়ে চার-পাঁচটি দোকানপাট ও একটি প্রাইভেট কার ভাঙচুর এবং একটি মোটরসাইকেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় আবার পাল্টাপাল্টি ধাওয়ায় পুলিশের দুই সদস্যসহ ২৫ জন নেতা-কর্মী আহত হন। বিএনপির নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে দুটি মামলা করেছে পুলিশ।নবাবগঞ্জ (ঢাকা): বান্দুরা, কলাকোপা, শোল্লা, কৈলাইল, আগলা এলাকার বিভিন্ন সড়কে গতকাল সকাল থেকে অবরোধ করার চেষ্টা করেন বিএনপির নেতা-কর্মীরা। পুলিশ বাধা দিলে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়াহয়।মুন্সিগঞ্জ: সকালে লৌহজং উপজেলার মাওয়া চৌরাস্তাসংলগ্ন কুমারভোগ ইউনিয়ন ও উত্তর কাজীর পাগলা ৫ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে অগ্নিসংযোগ করে দুর্বৃত্তরা। ঘটনায় জড়িত সন্দেহে বিএনপি ও স্বেচ্ছাসেবক দলের চার নেতা-কর্মীকে আটক করেছে পুলিশ।গাজীপুর: বিএনপির নেতা-কর্মীরা কাপাসিয়া উপজেলার সূর্য্য নারায়ণপুর ও রাজাবাড়ী বাজারে পুলিশের একটি পিকআপ ভ্যান ও একটি অটোরিকশায় আগুন দেন এবং দুটি লেগুনা ও তিনটি পিকআপ ভাঙচুর করেন। টোক বাজারে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়।টঙ্গী (গাজীপুর): সকাল ১০টায় টঙ্গীর চেরাগআলী এলাকায় জামায়াতে ইসলামী ও শিবিরের নেতা-কর্মীরা ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশ ও বিজিবির সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ হয়। নেতা-কর্মীরা কয়েকটি চলন্ত যানবাহনের কাচ ভাঙচুর করেন। বেলা আড়াইটায় হোসেন মার্কেট এলাকায় কেন্দ্রীয় শ্রমিক দলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন সরকার মহাসড়ক অবরোধের চেষ্টা করলে পুলিশের সঙ্গে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়।তিনি জাতীয় সংসদে সরকারি দলের একজন হুইপ। ২০০৮ সালের নির্বাচনের জন্য দেওয়া হলফনামা অনুযায়ী, তিনি ছিলেন সারা দেশের সব দলের প্রার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে কম সম্পদের মালিক। জনপ্রিয়তাই ছিল তাঁর পুঁজি। সাধারণ মানুষ চাঁদা দিয়ে তাঁর নির্বাচনী খরচ জুগিয়েছে।তৃণমূলের এমন একজন নেতা সাংসদ হয়ে আসায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে হুইপ করে বিশেষ মর্যাদা দেন। এই মর্যাদা কাজে লাগিয়ে গত পাঁচ বছরে তিনি নিজের ও নির্ভরশীলদের নামে জায়গা-জমি কিনেছেন, ঢাকায় একাধিক ফ্ল্যাটও কিনেছেন। কুড়িয়েছেন নিয়োগবাণিজ্য আর কাবিটা-কাবিখার টাকা নয়ছয়ের অভিযোগ। অর্জন করেছেন সন্ত্রাসী ‘হাতুড়ি বাহিনী’ ও ‘গামছা বাহিনী’ লালনের দুর্নাম। এলাকার মানুষ ও দলের নেতা-কর্মীদের কাছে হয়ে উঠেছেন ত্রাস।তিনি শেখ আবদুল ওহাব, গত নির্বাচনে যশোর-৬ (অভয়নগর-কেশবপুর) আসন থেকে নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সাংসদ। তবে গত পাঁচ বছরে দলের মধ্যে ও জনগণের কাছে তাঁর ভাবমূর্তি এতটাই ক্ষুণ্ন হয়েছে যে এবারের একতরফা নির্বাচনের জন্যও নৌকায় উঠতে পারেননি ওহাব। বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা ও দলের জরিপের ভিত্তিতে এবার তাঁকে মনোনয়নই দেয়নি আওয়ামী লীগ। কিন্তু জীবনে প্রথমবার সাংসদ ও হুইপ হয়ে ‘ক্ষমতার স্বাদ’ পাওয়া ওহাব দলের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন। পুনর্বিন্যস্ত আসন যশোর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রনজিত কুমার রায়ের একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী তিনি।এবার নির্বাচন কমিশনে জমা দেওয়া হলফনামা ও আয়-ব্যয় ফরমে ওহাব যা লিখেছেন, প্রথম আলোর অনুসন্ধান বলছে, পাঁচ বছরে তিনি তার চেয়েও অনেক বেশি সম্পদ করেছেন। আর অন্য অনেকের মতো অস্বাভাবিক বেড়েছে তাঁর গৃহিণী স্ত্রীর সম্পদ।হলফনামা ২০০৮ থেকে ২০১৩: ২০০৮ সালের হলফনামায় তিনি পেশা লিখেছিলেন, কৃষি ও সমাজসেবা। এবার তার সঙ্গে একটি ‘অন্যান্য’ যোগ হয়েছে।সেবারের হলফনামায় তাঁর আয়-সম্পদ ছিল যৎসামান্য। কৃষি থেকে বার্ষিক আয় এক লাখ ২০ হাজার, হাতে নগদ ৭৫ হাজার এবং ব্যাংকে ৫১ হাজার ১২৬ টাকা। নিজের নামে দুই একর এবং স্ত্রীর নামে এক একর কৃষি জমি। অকৃষি জমি ৪০ শতক, নিজের। পাঁচ ভরি স্বর্ণ, স্ত্রীর। একটি টিভি ও ফ্রিজ। গ্রামে একটি টিনচালা আধা পাকা বাড়ি।২০০৮ সালে অভয়নগরের নওয়াপাড়ায় এক নির্বাচনী জনসভায় ওহাব বলেছিলেন, ‘আমি নির্বাচিত হওয়ার পর আমার বাড়ির টিনশেড ঘর যদি বদলে যায়, তাহলে বুঝবেন আমি দুর্নীতি করেছি।’ এখন সিঙ্গাড়ী গ্রামে সেই বাড়ির জায়গায় উঠেছে দোতলা পাকা ভবন।এবারের হলফনামা ও আয়-ব্যয় বিবরণীতে সাংসদের বেতন-ভাতা বাবদ বার্ষিক আয় ২২ লাখ টাকার কিছু বেশি। হাতে নগদ দেড় লাখ এবং ব্যাংকে আড়াই লাখের কিছু বেশি টাকা। ১১ লাখ টাকার ডাকঘর সঞ্চয়পত্র (পিএসএস)। কৃষিজমি সাড়ে তিন একরের মতো। পূর্বাচলে রাজউকের ১০ কাঠার একটি প্লট। সিঙ্গাড়ীতে দোতলা পাকা বাসভবন; আধা পাকা টিনের বাড়ি। শুল্কমুক্ত সুবিধায় আনা ২৭ লাখ ১৬ হাজার টাকা দামের একটি জিপ। স্বর্ণ সাত ভরি। তিনটি ফ্রিজ। একটি বন্দুক ও একটি পিস্তল। বহু গুণ বেড়েছে গৃহিণী স্ত্রীর অর্থ-সম্পদ: নগদ সাড়ে আট লাখ টাকা। পিএসএস ২৫ লাখ ৯ হাজার ৮০৫ টাকার। ২৫ ভরি স্বর্ণ। একটি শীতাতপনিয়ন্ত্রণযন্ত্র। ৪৭ শতাংশ কৃষিজমি। নওয়াপাড়ায় ১০ শতাংশ অকৃষি জমি।নির্ভরশীলদের নামে দেখিয়েছেন ঢাকার শাহিনবাগে প্রতিটি ১৩৩৮ বর্গফুটের দুটি ফ্ল্যাট। অন্যত্র ৫৪ শতাংশ কৃষিজমিও দেখিয়েছেন। নিয়মানুযায়ী হলফনামায় এগুলোর অর্জনকালীন দাম রয়েছে। এ ছাড়া জমি বন্ধক বাবদ আট লাখ টাকার মতো দায় দেখিয়েছেন। হলফনামায় যা দেখাননি: হলফনামায় উল্লেখ নেই, তবে প্রথম আলো সাংসদ ওহাবের নামে জমির মালিকানার চারটি দলিল পেয়েছে। এগুলো দেখাচ্ছে, তিনি সিঙ্গাড়ী মৌজায় ৫৩ শতাংশ অকৃষি জমি এবং ভাটপাড়া মৌজায় ৭২ শতাংশ ধানি জমি কিনেছেন।অভয়নগর ভূমি নিবন্ধন কার্যালয়ের সূত্র বলছে, ওহাবের মেয়ে সোনিয়া আফরিন হীরার নামে কোদলা মৌজায় ২০১১ ও ২০১২ সালে পাঁচটি আলাদা দলিলে মোট চার একর ৬৩ শতাংশ জমি কেনা হয়েছে, যার বাজারদর এক কোটি টাকার বেশি। সোনিয়া আফরিন বিবাহিত। তাঁর ব্যবসায়ী স্বামীর বাড়ি ঝিকরগাছা উপজেলায়। সূত্রটি বলছে, মেয়ের নামে এ জমি কিনেছেন ওহাব।নামের পাগল: এম এ পাস এই সাংসদ শিক্ষা মন্ত্রণালয়-সম্পর্কিত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য। ২০০৮ সালে নির্বাচিত হওয়ার পরপর তিনি সিঙ্গাড়ী গ্রামের কলেজটির নাম পাল্টে নিজের নামে করে নেন। আইনানুযায়ী এ জন্য তাঁকে কলেজের নামে ১৫ লাখ টাকা দিতে হয়েছে। হলফনামার তথ্যানুসারে এ টাকা তাঁর তখন ছিল না।আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতারা বলছেন, তিনি ওই কলেজের নামে নওয়াপাড়ার ব্যবসায়ী-শিল্পপতিদের কাছ থেকে চাঁদা, রড, সিমেন্ট ইত্যাদি নিতেন। কয়েকজন ব্যবসায়ীও এ অভিযোগ করেন। গত বছর পর্যন্ত কলেজটির নামে তিনি যশোর জেলা পরিষদের কাছ থেকে প্রায় ২৯ লাখ টাকা নিয়েছেন।হুইপ ওহাব এলাকায় দুটি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় নিজের নামে এবং একটি তাঁর বাবার নামে প্রতিষ্ঠা করেছেন। এ জন্য প্রতিটি স্কুলের নামে ৩৩ শতাংশ করে জমি দান করতে হয়। কিন্তু দলিল দেখাচ্ছে, এই স্কুলগুলোর জমি দিয়েছেন অন্যরা। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সূত্র বলছে, অন্যের জমিতে নিজের নামে সরকারি স্কুল করা বেআইনি। এ ছাড়া অভয়নগরে খাসজমিতে নিজের নামে স্টেডিয়াম নির্মাণের জন্য কাবিখার চালের টাকায় ব্যয় করেছেন তিনি।নিয়োগ-বাণিজ্য: অভিযোগ আছে, তাঁর অর্থবিত্তের বড় উৎস এলাকার স্কুল-কলেজে শিক্ষক-কর্মচারী নিয়োগে বাণিজ্য। এ জন্য তিনি বিভিন্ন সময়ে নওয়াপাড়া মডেল কলেজ, নওয়াপাড়া কলেজ, কেশবপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজ, কেশবপুর কলেজ ও শহীদ ফ্লাইট লেফটেন্যান্ট মাসুদ মেমোরিয়াল কলেজের সভাপতি হয়েছেন। এসব প্রতিষ্ঠানে নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ আছে। এ ছাড়া ১০৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে সহকারী গ্রন্থাগারিক ও ২১টি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে নৈশপ্র্রহরী নিয়োগেও হুইপের বিরুদ্ধে অর্থ লেনদেনের অভিযোগ রয়েছে। নওয়াপাড়া কলেজে ২০১০ সালে নিয়োগ পরীক্ষায় প্রথম হয়ে যোগ দিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতার ছেলে। তিনি অভিযোগ করেছেন, হুইপ তাঁর কাছে তিন লাখ টাকা দাবি করেন। টাকা দিতে না পারলে কলেজ তাঁর পদে পুনর্নিয়োগের বিজ্ঞপ্তি দেয়। তিনি মামলা করলে হুইপ তাঁকে সেটা প্রত্যাহারে বাধ্য করেন। কেশবপুর উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতা এবং কেশবপুর পাইলট স্কুল অ্যান্ড কলেজের পরিচালনা কমিটির সদস্য আতিয়ার রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ওই কলেজের অধ্যক্ষ পদে নিয়োগের জন্য রুহুল আমিন নামের একজন প্রার্থীর কাছ থেকে তাঁর মাধ্যমে পাঁচ লাখ টাকা নিয়েছিলেন হুইপ। কিন্তু তাঁকে নিয়োগ দেননি। টাকাও ফেরত দেননি। তাঁর বিরুদ্ধে টিআর, কাবিখা বা কাবিটা বরাদ্দের টাকার ভাগ নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে। প্রথম আলো অনুসন্ধান করে বিভিন্ন প্রকল্পের বরাদ্দ পাওয়া অনেকগুলো প্রতিষ্ঠানের অস্তিত্ব পায়নি।ত্রাস ও সন্ত্রাস: গত নির্বাচনে নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ ওহাবের নির্বাচন তহবিলে চাঁদা দিয়েছেন। কিন্তু এখন কেশবপুর-অভয়নগরে বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলে প্রথম আলো তাঁর প্রতি ভীতি দেখতে পেয়েছে। দলের নেতা-কর্মীরাও তাঁর ভয়ে সন্ত্রস্ত ও অতিষ্ঠ। অভিযোগ আছে, নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা এবং সমালোচকদের শায়েস্তা করার জন্য তিনি দুটি সন্ত্রাসী বাহিনী গড়ে তোলেন। অভয়নগরে ‘গামছা বাহিনী’। কেশবপুরে ‘হাতুড়ি বাহিনী’। এই দুই বাহিনীর নেতা ও অধিকাংশ সদস্যকে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে হুইপের পাশে দেখা যেত। গামছা বাহিনীর প্রধান হিসেবে পরিচিত নওয়াপাড়ার যুবলীগ নেতা আলমগীর হোসেন শিমুল গত ২৭ অক্টোবর হরতালের সময় প্রতিপক্ষের পিটুনি ও ধারালো অস্ত্রের আঘাতে নিহত হন। হুইপ তখন ঢাকায় ছিলেন। তবে গত ১৫ নভেম্বর তিনি নওয়াপাড়ায় শিমুলের বাড়ি গিয়ে তাঁর হত্যাকারীদের শাস্তি নিশ্চিত করার কথা দিয়ে আসেন।ওই দুই বাহিনী ছাড়াও অভয়নগরের সুন্দলী ইউনিয়নের চেয়ারম্যান পরিতোষ বিশ্বাস ও সিদ্ধিপাশা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান খান এ কামাল হুইপের সরাসরি মদদে নিজ নিজ এলাকায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেন।মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে আবদুল ওহাব তাঁর বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও সন্ত্রাসী লালনের অভিযোগগুলো অস্বীকার করেন। তবে অভয়নগর উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা অওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আবদুল মালেক মোল্লা প্রথম আলোকে বলেন, হুইপের কাজকর্ম দলকে বিব্রত ও ক্ষুব্ধ করেছে। (প্রতিবেদনটির তথ্য অনুসন্ধানে সহায়তা করেছেন আমাদের যশোর প্রতিনিধি মনিরুল ইসলাম ও কেশবপুর প্রতিনিধি দিলীপ মোদক)।
রাজধানীর হাইকোর্ট মোড়ে গতকাল শুক্রবার একটি মিনিবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে কদম ফোয়ারা চত্বরের ওপর উঠে গেলে তিনজন আহত হন। আহত ব্যক্তিদের একজন রিকশাচালক মো. ফরিদ। অন্য দুজন ওই রিকশার যাত্রী। তবে তাঁদের নাম-পরিচয় পাওয়া যায়নি। ফরিদ ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, বেলা দুইটার দিকে গুলিস্তানগামী শুভযাত্রা পরিবহনের একটি মিনিবাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে প্রথমে একটি যাত্রীবাহী রিকশাকে ধাক্কা দেয়। এরপর দ্রুতগতিতে বাসটি কদম ফোয়ারা চত্বরের ওপর উঠে পড়ে। মিনিবাসের ধাক্কায় সড়কে ছিটকে পড়ে আহত হন রিকশাচালক ও দুই নারী যাত্রী।শাহবাগ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) এম এ জলিল বলেন, ‘মিনিবাসটি আটক করা হয়েছে। তবে চালক পালিয়ে গেছেন।’বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মিয়া বলেছেন, দেশ একটি মারাত্মক সংকটের মুখোমুখি। গত তিন দিনে অনেক প্রাণ ঝরে গেছে। নির্বাচনকালীন সরকারপদ্ধতি নিয়ে যে সংকট দেখা দিয়েছে, এই সংকট নিরসনের উপায় বের করার দায়িত্ব সবার।গতকাল সোমবার সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির দক্ষিণ হলে নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে ফোরাম আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে রফিকুল ইসলাম মিয়া এ কথা বলেন। তিনি অভিযোগ করেন, এই সাংবিধানিক সংকট সৃষ্টি করেছে সরকার। বাংলাদেশে নির্বাচনকালীন সরকারপদ্ধতি একটি মীমাংসিত বিষয় ছিল।রফিকুল ইসলাম মিয়া আরও বলেন, সংবিধানের ৭২(১)-এ দেখবেন, ৬০ দিনের মধ্যে সংসদ আহ্বানের কথা। কিন্তু যখন ১২৩-এর ৩(ক) কার্যকর হলো, তখন সেটা স্থগিত হয়ে গেল। সে অবস্থায় নির্বাচনকালীন সময়ে সরকারের সার্বিক দায়িত্ব নির্বাচন কমিশনের। তিনি বলেন, ‘নির্বাচন কমিশনের কাছে দাবি করছি, যদি সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করতে চান, তাহলে অবিলম্বে রিটার্নিং কর্মকর্তা কে হবেন সেটা ঠিক করেবেন।’এ সময় ফোরামের মহাসচিব ও বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব মাহবুবউদ্দিন খোকন, জয়নুল আবেদীন, নিতাই রায় চৌধুরী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।নারায়ণগঞ্জ শহরের সৈয়দপুর এলাকার শীতলক্ষ্যা নদী থেকে গতকাল বুধবার অজ্ঞাতপরিচয় এক যুবকের (২৫) লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ও শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশটি নদীতে ফেলে দেয় দুর্বৃত্তরা।নারায়ণগঞ্জ সদর মডেল এসআই আতাউর রহমান জানান, দুপুরে সৈয়দপুর এলাকায় শীতলক্ষ্যা নদীতে লাশ ভাসতে দেখে স্থানীয় লোকজন পুলিশকে খবর দেন। পরে লাশটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য নারায়ণগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছেঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার পুলিশ গতকাল শনিবার সকালে হাসনাবাদ কবরস্থান এলাকায় বুড়িগঙ্গা নদী থেকে ব্যবসায়ী আনোয়ার হোসেন (৪২) নামের এক ব্যক্তির লাশ উদ্ধার করেছে।আনোয়ার হোসেনের পৈতৃক বাড়ি নোয়াখালী হলেও তিনি দীর্ঘদিন ধরে সপরিবারে ঢাকার নবাবপুর রোডে বসবাস করছিলেন।দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার এসআই আবদুস সালাম জানান, লাশের শরীরে আঘাতের কোনো চিহ্ন নেই। ধারণা করা হচ্ছে, শ্বাসরোধে হত্যার পর লাশ পানিতে ফেলে দেওয়া হয়েছে।ভাই খুরশিদ আলম জানান, গত বুধবার দুপুরে নিজের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান থেকে নামাজ পড়তে বের হওয়ার পর তিনি নিখোঁজ হন।
উত্তরা ফ্ল্যাট প্রকল্প নিয়ে আরও জটিলতা ও অনিশ্চয়তা তৈরি হয়েছে। কারণ, নির্ধারিত সময়ে কাজ করতে পারেননি সরকারি দলের দুই সাংসদ এনামুল হক ও নসরুল হামিদ। ১৮ মাসে ৫৫ শতাংশ কাজ করার কথা থাকলেও, তাঁরা করেছেন মাত্র ৫ শতাংশ। কিন্তু দুই সাংসদের প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে রাজউক চিঠি দেওয়া ছাড়া আর কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আইন অনুযায়ী, দরপত্র বাতিল করে প্রতিষ্ঠানগুলোকে কালো তালিকাভুক্ত করার কথা থাকলেও তা করা হয়নি। উল্টো দুই সাংসদ মালয়েশিয়ার দুটি কোম্পানিকে আড়াই হাজার কোটি টাকার এ কাজের সঙ্গে যুক্ত করেছেন। ইতিমধ্যে মালয়েশিয়ার দুই কোম্পানির সঙ্গে চুক্তিপত্রও হয়েছে।অভিযোগ উঠেছে, নিজেরা কাজ করতে না পেরে তাঁরা মালয়েশিয়ার কোম্পানির কাছে কাজ বিক্রি করে দিচ্ছেন। তবে গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় এবং রাজউকের কর্মকর্তারা বলছেন, নির্ধারিত সময়ে প্রতিষ্ঠানগুলো কাজ করতে না পারলে নিয়ম অনুযায়ী দরপত্র বাতিল এবং প্রতিষ্ঠানকে কালো তালিকাভুক্ত করা হবে। কারণ, পিপিআর (পাবলিক প্রকিউরমেন্ট রুলস) অনুযায়ী, তৃতীয় কোনো পক্ষকে এ কাজ দেওয়ার সুযোগ নেই। এ বিষয়ে জানতে চাইলে রাজউকের চেয়ারম্যান নূরুল হুদা প্রথম আলোকে বলেন, ‘তৃতীয় পক্ষকে এখন কাজ দেওয়ার সুযোগ নেই। যাদের কাজ দিয়েছি, আমরা তাদেরই ধরব। কার সঙ্গে কার এমওইউ (সমঝোতা স্মারক) হচ্ছে, সেগুলো আমাদের দেখার বিষয় নয়। আমরা ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে আগেই নোটিশ দিয়েছি। অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে পুরোপুরি কাজ শুরু করতে না পারলে আমরা জনস্বার্থে আইন অনুযায়ী যা করার করব।’নিম্ন ও মধ্যম আয়ের জনগোষ্ঠীর জন্য সম্পূর্ণ সরকারি উদ্যোগে রাজউকের সম্প্রসারিত উত্তরা এলাকার ১৮ নম্বর সেক্টরে সর্বমোট ২০ হাজার ফ্ল্যাট তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। ২১৪ দশমিক ৪৪ একর জমির ওপর এ ফ্ল্যাটগুলো তৈরিতে সরকারের খরচ হবে নয় হাজার ৩০ কোটি ৭১ লাখ ৮৭ হাজার টাকা।এর মধ্যে দুই হাজার ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে ‘এ’ শ্রেণীতে (১২৫০ বর্গফুট) ১৬ তলাবিশিষ্ট ৭৯টি ভবন তৈরির জন্য কার্যাদেশ দিয়েছে সরকার। সরকারদলীয় সাংসদ এনামুল হকের মালিকানাধীন এনা প্রপার্টিজ দক্ষিণ কোরিয়ার ডোঙ্গা এএইচ ও ডিডিজের সঙ্গে যৌথভাবে ৬১টি ভবন তৈরির কাজ পেয়েছে।সাংসদ নসরুল হামিদের মালিকানাধীন হামিদ কনস্ট্রাকশন লিমেটেডের (এইচএমএল) সঙ্গে বিল্ডিং ফর ফিউচার (বিএফএল) যৌথভাবে ১৬টি ভবন নির্মাণের কাজ পেয়েছে। বাকি একটি ভবন নির্মাণের কাজ পেয়েছে আনাম ট্রেডার্স।রাজউক সূত্রে জানা গেছে, একেকটি ভবন হবে ১৬ তলা। বেইসমেন্ট ও কার পার্কিংয়ের জন্য দুটি তলা হবে। বাকি ১৪ তলার একেকটিতে ছয়টি করে মোট ৮৪টি ফ্ল্যাট থাকবে। ৭৯টি ভবনে মোট ছয় হাজার ৬৩৬টি ফ্ল্যাট হবে। রাজউক ও গণপূর্ত অধিদপ্তর যৌথভাবে কাজ তদারক করছে। স্থাপত্য অধিদপ্তর ও গণপূর্ত অধিদপ্তর ভবনগুলোর নকশা তৈরি করেছে।রাজউক সূত্রে জানা গেছে, ২০১১ সালের ডিসেম্বরে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানগুলোকে কাজ পাওয়ার কথা জানানো হয়। ফেব্রুয়ারিতে চূড়ান্ত চুক্তি হয়। ৩০ মাসের মধ্যে কাজ শেষ হওয়ার কথা। কিন্তু গত ১৮ মাসে রাজউক থেকে বারবার চিঠি দেওয়ার পরও কাজ এগোয়নি।রাজউকের কর্মকর্তারা বলেন, গত মে মাসে এনাকে চূড়ান্ত নোটিশ দেওয়া হয়। এতে বলা হয়, ২৮ দিনের মধ্যে নির্ধারিত কাজ না করলে তাদের কার্যাদেশ বাতিল করা হবে। এর পরও কাজ এগোয়নি। এখন তাদের কার্যাদেশ বাতিল হওয়ার কথা। কিন্তু কয়েক দিন আগে দুই সাংসদ মন্ত্রণালয় ও রাজউককে জানান, মালয়েশিয়ান কোম্পানি এএলম বিল্ডার্স এবং গেমিল্যাং ডেভেলপমেন্টের সঙ্গে তাঁরা চুক্তি করেছেন। এখন তাঁরা দ্রুত এ কাজ এগিয়ে নিতে পারবেন।গতকাল শুক্রবার প্রকল্প এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, কাজ বন্ধ। এখানে-সেখানে নির্মাণসামগ্রী পড়ে আছে। লোহায় মরচে ধরেছে। নিরাপত্তারক্ষীরা জানান, এখন লোকজন নেই। ঈদের পর পুরোদমে কাজ শুরু হবে বলে তাঁরা শুনেছেন।কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে জানতে চাইলে প্রকল্প এলাকায় থাকা এনা প্রপার্টিজের উপমহাব্যবস্থাপক মামুনুর রশিদ বলেন, ‘কাজ চলছে। তবে বাস্তবতা হলো, যে দরে আমরা কাজ নিয়েছি, বাস্তবে জিনিসপত্রের দাম অনেক বেড়েছে। আমরা বিষয়টি বিবেচনার জন্য আবেদন জানিয়েছি। কিন্তু সেটি বিবেচনা করা হচ্ছে না।’মালয়েশিয়ার একটি কোম্পানির প্রতিনিধি প্রথম আলোকে বলেন, ‘এনা তাদের বলেছে, কাজটি দিয়ে দেবে। এ জন্য এমনভাবে চুক্তি করা হবে, যাতে কাজটি আর এনার থাকবে না। তাদেরই হবে। আর সে কারণেই মালয়েশিয়ার কোম্পানি আগ্রহ দেখিয়েছে। শুধু ‘এ’ নয়, ‘বি’ এবং ‘সি’ শ্রেণীর ব্যাপারেও মালয়েশিয়ার কোম্পানি আগ্রহী।যোগাযোগ করা হলে এনার পরিচালক সামিউল আলম বলেন, ‘মালয়েশিয়ার দুটি কোম্পানির সঙ্গে আমাদের সমঝোতা হয়েছে। আমরা যে ৬১টি ভবন তৈরির কাজ পেয়েছি, সেগুলো তারা করবে। আর্থিক ও কারিগরি সহায়তা সবই তারা দেবে।’এইচএমএল ও বিএফএলের ১৬টি ভবনের বিষয়ে কী হবে, জানতে চাইলে সাংসদ নসরুল হামিদ বলেন, ‘আমি কিছু বলতে চাই না। বিএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীরুল হক বলতে পারবেন।’তানভীরুল হক বলেন, ‘অন্যরা কে কী করছে জানি না। আমি আমার কাজ নিজেই করতে চাই। কারণ, আমরা কাজ অনেক দূর এগিয়েছি। তবে সমঝোতা অনুযায়ী মালয়েশিয়ার কোম্পানির কাছ থেকে আমরা শুধু কারিগরি সহায়তা নেব।’উত্তরার ওই ফ্ল্যাটের জন্য রাজউকে আবেদন করেছেন ছয় হাজার ১০০ জন। প্রত্যেকের কাছে আবেদনপত্রের সঙ্গে তিন লাখ টাকা করে নেওয়া হয়েছে। ফ্ল্যাট পেলে তাঁদের আরও অন্তত ৫৬ লাখ টাকা দিতে হবে। তবে কত বছর পর তাঁরা ফ্ল্যাট বুঝে পাবেন, সে তথ্য কারও জানা নেই।গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) অনুযায়ী, কোনো সাংসদ সরকারের সঙ্গে ব্যবসা করতে পারেন না। কিন্তু এ ক্ষেত্রে এই বিধান মানা হয়নি।মন্ত্রণালয় ও রাজউকের কর্মকর্তারা বলেন, সাংসদেরা যুক্ত হওয়ায় প্রকল্পটি পুরোপুরি রাজনৈতিক হয়ে গেছে। কাজের এখন যে অবস্থা, তাতে নির্ধারিত সময়ে তো দূরের কথা, কখনো এ কাজ শেষ হবে কি না, যথেষ্ট শঙ্কা রয়েছে।হরতালে সহিংসতা ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে সমাবেশ করেছে সম্মিলিত আইনজীবী সমন্বয় পরিষদ। গতকাল সোমবার দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতি ভবনে ওই প্রতিবাদ সমাবেশ হয়।সমাবেশ থেকে সংঘাত ও হরতাল প্রত্যাহার করে নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীর রূপরেখা নিয়ে আলোচনায় বসার জন্য বিরোধীদলীয় নেতার প্রতি আহ্বান জানানো হয়।পরিষদের পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এম আমীর-উল ইসলামের সভাপতিত্বে সমিতির উত্তর হলে অনুষ্ঠিত সভায় আইনজীবী আবদুল মতিন খসরু, সুব্রত চৌধুরী, এ কে এম জগলুল হায়দার আফ্রিক, নুরুল ইসলাম সুজন, আজারুল্লাহ ভূঁইয়া, মোতাহার হোসেন প্রমুখ বক্তব্য দেন।৪৮ ঘণ্টার রাজপথ, রেলপথ ও নৌপথ অবরোধ কর্মসূচি আরও ২৩ ঘণ্টা বাড়িয়েছে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট। আজ আগামীকাল শুক্রবার ভোর পাঁচটা পর্যন্ত সারা দেশে জোটের এই কর্মসূচি চলবে।গতকাল বুধবার বিকেল সাড়ে চারটায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী আহমেদ দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলন করে অবরোধের সময় ১২ ঘণ্টা বৃদ্ধি এবং অবরোধ কর্মসূচিতে নিহতদের জন্য আগামীকাল শুক্রবার জুমার নামাজের পর ঢাকাসহ সারা দেশে গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি ঘোষণা দেন। এরপর রাত সাড়ে ১১টার দিকে আবার সংবাদ ব্রিফিং করে তিনি অবরোধ কর্মসূচি আরও ১১ ঘণ্টা বাড়ানোর ঘোষণা দেন।এদিকে নির্বাচনের মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার শেষ তারিখ ২ ডিসেম্বর সোমবার সামনে রেখে রোববার থেকে আবার টানা কর্মসূচি দেওয়ার পরিকল্পনা করছে বিরোধী দল। এর মধ্যে আগামী সোমবার নির্বাচন কমিশন এবং সারা দেশে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় ঘেরাও কর্মসূচিও আসতে পারে বলে বিএনপির নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে।দলীয় সূত্রগুলো জানায়, এই অবরোধ কর্মসূচি শুক্র-শনিবারসহ টানা ২ ডিসেম্বর পর্যন্ত চালিয়ে নেওয়ার বিষয়ে আলোচনা হলেও ধর্মীয় অনুভূতির দিক বিবেচনায় নিয়ে শুক্রবার অবরোধ না দিয়ে গায়েবানা জানাজার কর্মসূচি দেওয়া হয়েছে। এর পরের কর্মসূচি শনিবার থেকে নাকি রোববার থেকে শুরু করা হবে, তা গতকাল রাত সাড়ে নয়টায় এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত চূড়ান্ত করা হয়নি বলে দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে।বিএনপির একাধিক সূত্র জানায়, দলটির নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে মনে করা হয়েছিল, অবরোধ কর্মসূচির পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের পক্ষ থেকে সমঝোতার বিষয়ে ইতিবাচক কোনো সাড়া পাওয়া যাবে। কিন্তু গতকাল পর্যন্ত সে ধরনের কোনো ইঙ্গিত তারা পায়নি। বরং বিএনপির কাছে খবর আছে, সরকার আরও কঠোর হচ্ছে। এর পাল্টা হিসেবে বিএনপি সরকারকে তাদের দৃঢ়তা দেখাতে অবরোধ আরও ১২ ঘণ্টা বাড়ানোর ঘোষণা দেয়।তবে আনুষ্ঠানিকভাবে ১৮-দলীয় জোটের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, প্রথম দুই দিনে পুলিশ ও সরকার-সমর্থকদের হামলায় বিরোধী আট নেতা-কর্মীর মৃত্যু, আহত হওয়া ও নেতা-কর্মীদের গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে অবরোধ কর্মসূচি বাড়ানো হয়েছে।বিএনপির চেয়ারপারসনের একজন উপদেষ্টা প্রথম আলোকে বলেন, সরকারের পক্ষ থেকে কার্যকর উদ্যোগ দেখা না গেলে তাঁদের অবরোধ টানা হতে পারে।নির্বাচনের তফসিল প্রত্যাখ্যান করে গত মঙ্গলবার থেকে টানা ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের ডাক দিয়েছিল ১৮-দলীয় জোট। মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে শুরু হওয়া এই কর্মসূচি আজ সকাল ছয়টায় শেষ হওয়ার কথা ছিল।‘সংলাপ-সংলাপ খেলা’: গতকাল সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, ‘সংলাপ-সংলাপ খেলায় দেশবাসীকে বিভ্রান্ত করা হচ্ছে। মিথ্যা বিবৃতি ও সংলাপের নামে অসত্য, ভিত্তিহীন অপপ্রচার চালিয়ে ১৮-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংশয় তৈরির চেষ্টা হচ্ছে।’রিজভী আহমেদ বলেন, সরকার এখন অপপ্রচার ও গুজবের ওপর নির্ভর করছে। কোনো ধরনের গুজবকে প্রশ্রয় না দিয়ে বিএনপিসংক্রান্ত সংবাদের বিষয়ে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে সত্যতা যাচাইয়ের জন্য সাংবাদিকদের প্রতি অনুরোধ জানান তিনি।বিএনপির চেয়ারপারসন ও ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবের সরাসরি বক্তব্য এবং তাঁদের নামে অথবা বিএনপির নামে কেন্দ্রীয় দপ্তর থেকে পাঠানো কোনো বিবৃতি ছাড়া গোপন কোনো সূত্রের বরাত দিয়ে প্রকাশিত কোনো সংবাদে বিভ্রান্ত না হতে নেতা-কর্মীদের প্রতি আহ্বান জানান দলের এই যুগ্ম মহাসচিব।রিজভী আহমেদ বলেন, রাজনৈতিক সমঝোতার আগেই তফসিল ঘোষণা করায় সারা দেশে প্রতিরোধ-প্রতিবাদের দাবানল জ্বলে উঠেছে। এর জন্য তিনি সরকার ও নির্বাচন কমিশনকেই দায়ী করেন। তিনি অভিযোগ করেন, সরকার পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি পেশাদার সন্ত্রাসীদেরও বিরোধী দল দমনে মাঠে নামিয়েছে।রিজভী আহমেদ দাবি করেন, গত দুই দিনের অবরোধে সারা দেশে বিরোধী জোটের আট নেতা-কর্মী নিহত, ৮৫০ জনের বেশি গ্রেপ্তার এবং দুই হাজারের বেশি নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে ককটেল হামলায় সাংবাদিক আহত হওয়ার ঘটনায় ‘ক্ষমতাসীনদের সশস্ত্র দুষ্কৃতকারীদের’ দায়ী করেন এবং এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের শাস্তিরও দাবি জানান রিজভী।বছরের শেষ ম্যাচে জয় পেয়েছে ম্যানচেস্টারের দুই প্রতিবেশীই। দুই দলই জিতেছে ১-০ গোলে। এডিন জেকোর একমাত্র গোলে ক্রিস্টাল প্যালেসকে হারিয়ে পয়েন্ট তালিকার শীর্ষে উঠে গেছে ম্যানচেস্টার সিটি। এ নিয়ে মৌসুমে ঘরের মাঠে সিটি জিতল ১০ ম্যাচেই। নরউইচের মাঠে গিয়ে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেডের কষ্টার্জিত জয়টা ড্যানি ওয়েলবেকের গোলে। এই জয়ে ডেভিড ময়েসের দল উঠে এসেছে ৬ নম্বরে।দুই দিন আগে লিভারপুলের বিপক্ষে খেলা একাদশ থেকে কাল ছয়টি পরিবর্তন আনেন সিটি কোচ ম্যানুয়েল পেলেগ্রিনি। গোল পেতেও তাই অপেক্ষায় থাকতে হয়েছে ৬৬ মিনিট পর্যন্ত। রুনিবিহীন ইউনাইটেডও মূল্যবান তিন পয়েন্ট এনে দেওয়া গোলটি পেয়েছে দ্বিতীয়ার্ধেই। হাভিয়ের হার্নান্দেজের বাড়ানো বল ধরে ওয়েলবেক নরউইচের গোলরক্ষককে কাটিয়ে জড়িয়ে দেন জালে। এএফপি।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ৬৭তম জন্মদিন আজ শনিবার। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ও বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবের জ্যেষ্ঠ সন্তান শেখ হাসিনা ১৯৪৭ সালে এই দিনে গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়ায় জন্মগ্রহণ করেন।আশির দশকের শুরুতে জাতীয় রাজনীতিতে আসেন শেখ হাসিনা। ১৯৯৬ সালের নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সংখ্যাগরিষ্ঠ আসন পেয়ে সরকার গঠন করলে শেখ হাসিনা প্রথমবারের মতো প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। এরপর ২০০৮ সালের ২৯ ডিসেম্বরের সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ বিজয়ী হলে তিনি দ্বিতীয়বারের মতো প্রধানমন্ত্রী হন। তাঁর জন্মদিন উপলক্ষে আওয়ামী লীগসহ বিভিন্ন সামাজিক-সাংস্কৃতিক সংগঠন বিস্তারিত কর্মসূচি নিয়েছে।কর্মসূচির মধ্যে জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমসহ দেশের বিভিন্ন মসজিদে মিলাদ মাহফিল ও বিশেষ মোনাজাত, ঢাকেশ্বরী জাতীয় মন্দিরে এবং প্যাগোডা, গির্জাসহ বিভিন্ন ধর্মীয় উপাসনালয়ে বিশেষ প্রার্থনা সভা অনুষ্ঠিত হবে। দিনটি উপলক্ষে ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উদ্যোগে বিকেল চারটায় বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে মিলাদ, দোয়া মাহফিল, বস্ত্র বিতরণ ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হবে।জন্মদিন উপলক্ষে শেখ রাসেল জাতীয় শিশু-কিশোর পরিষদ, বাংলাদেশ ছাত্রলীগ, যুবলীগসহ বিভিন্ন সংগঠন কর্মসূচি নিয়েছে।দেশের বর্তমান পরিস্থিতিতে সেনাবাহিনীর ক্ষমতা গ্রহণের সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। কুয়েত টাইমসকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি সবার মধ্যে সংবিধান ও গণতান্ত্রিক চর্চার ওপর গুরুত্বারোপ করেছেন। খবর ইউএনবির।আজ মঙ্গলবার প্রকাশিতব্য ওই সাক্ষাৎকারে শেখ হাসিনা বলেন, ‘গণতান্ত্রিক পন্থার প্রতি আমরা দৃঢ়ভাবে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ এবং আমি মনে করি না ২০০৭ সালে যা ঘটেছিল, এবার তা ঘটবে। আমাদের সবার উচিত সংবিধান মানা এবং সংবিধানের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা।’ চলমান রাজনৈতিক সংকটের বিষয়ে মন্তব্য করে তিনি বলেন, গণতন্ত্র এবং জনগণের শাসনের প্রতি তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস আছে।প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘২০০৭ সালে নির্বাচন হয়নি, কারণ তৎকালীন রাষ্ট্রপতি, যিনি বিএনপির সদস্য ছিলেন, জরুরি অবস্থা জারি করেছিলেন। তিনিই সেনাবাহিনীর হাতে ক্ষমতা তুলে দিয়েছিলেন। আমরা চাই না ২০০৭ সালের ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটুক।’শেখ হাসিনা অভিযোগ করেন, বিরোধী দলই চাইছে ২০০৭ সালের ঘটনা আবার ঘটুক।বর্তমান সরকারের সময় শান্তিপূর্ণ ও স্বচ্ছভাবে অনেকগুলো নির্বাচন হয়েছে এবং বিরোধীরা অনেকগুলোতে বিজয়ী হয়েছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘আমরা স্মরণ করতে পারি ২০০৪ সালে বিএনপি সরকারের সময়কার নির্বাচনের কথা। তখন ২৫০ জনের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিল এবং অস্ত্রের মুখে নির্বাচনে ব্যাপক জালিয়াতি হয়েছিল।’রাজনৈতিক অস্থিরতায় চরম দুর্দশায় পড়েছেন পরিবহনশ্রমিকেরা। হরতাল-অবরোধের সময় গাড়ি ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগ করা হয়। এতে পরিবহনের মালিকেরা ভয়ে গাড়ি নামাচ্ছেন না। গাড়ির চাকা বন্ধের সঙ্গে সঙ্গে অচল হয়ে পড়ছে পরিবহনশ্রমিকের সংসারের চাকাও।পরিবহন মালিক সমিতি সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরে প্রতিদিন এক হাজার সিটি সার্ভিস বাস, এক হাজার ২০০ টেম্পো ও সাড়ে সাত হাজার সিএনজিচালিত অটোরিকশা চলাচল করে। কিন্তু সাম্প্রতিক রাজনৈতিক অস্থিরতায় গত তিন মাসে এ সংখ্যা কমে গেছে। ভাঙচুর ও অগ্নিসংযোগের ভয়ে বেশির ভাগ মালিক গাড়ি চালানো বন্ধ রেখেছেন।পরিবহন শ্রমিক সংগঠন সূত্র জানায়, চট্টগ্রাম নগরে চলাচলকারী সিটি সার্ভিস বাসগুলোর মালিককে প্রতিদিন গড়ে দুই থেকে চার হাজার টাকা জমা দিতে হয়। টেম্পো মালিকের দৈনিক জমা এক হাজার টাকা ও সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিককে জমা দিতে হয় দৈনিক ৬০০ টাকা। এর সঙ্গে রয়েছে জ্বালানিসহ আনুষঙ্গিক খরচ। এসব পরিবহনের সঙ্গে জড়িত প্রায় সব শ্রমিকই দৈনিক চুক্তিতে কাজ করেন।টেম্পোচালক মো. লিটন জানান, স্বাভাবিক সময়ে সব খরচ মিটিয়ে তিনি ঘরে আনতে পারতেন দৈনিক সাড়ে তিন শ থেকে চার শ টাকা। কিন্তু গত দুই মাসের বেশির ভাগ দিনই বেকার থাকতে হয়েছে তাঁকে। আটজনের পরিবারে দুবেলা খাবার জোগাড় করাটাই এখন তাঁর সবচেয়ে বড় স্বপ্ন।এ সপ্তাহে চট্টগ্রামে বিরোধী দলের ডাকা দুদিনের হরতাল ও অবরোধে রাস্তায় নামতে পারেনি বেশির ভাগ গাড়ি। চট্টগ্রাম সিএনজিচালিত অটোরিকশা মালিক সমিতির সভাপতি আবুল কাশেম জানান, মঙ্গল ও বুধবারের অবরোধে সাড়ে সাত হাজার অটোরিকশার মধ্যে মাত্র ২০০ অটোরিকশা রাস্তায় নামিয়েছেন তাঁরা। এর মধ্যেও বেশ কয়েকটি ভাঙচুরের কবলে পড়েছে।চট্টগ্রাম অটো টেম্পো ড্রাইভার ও সহকারী ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক নজরুল ইসলাম বলেন, পরিবহনশ্রমিক পরিবারে এখন অভাব আর অভাব। বেশির ভাগ শ্রমিকই এ মাসে বাসা ভাড়া দিতে পারেননি। অর্ধাহারে-অনাহারে দিন কাটাতে হচ্ছে তাঁদের। অনেকে বাধ্য হয়ে পরিবারের সদস্যদের গ্রামে পাঠিয়ে দিয়েছেন। গাড়ি মেরামতের কাজ করা শ্রমিকেরাও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে বেকার হয়ে পড়েছেন।বৃহত্তর চট্টগ্রাম পরিবহন মালিক-শ্রমিক ঐক্য পরিষদের আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ বলেন, ‘আমাদের নিরাপত্তা দেওয়ার দায়িত্ব সরকারের। অথচ তারা ব্যর্থ। নিজেদের বাঁচাতে করণীয় নিয়ে প্রতিদিনই মিটিং করছি। আমরা ঠিক করেছি, রাস্তায় গাড়ি নামানোর সময় আমরাও লাঠিসোঁটা নিয়ে নামব। আমাদের কেউ আক্রমণ করলে আমরাও পাল্টা আক্রমণ করব।’১৯৯০ সালের ডিসেম্বরে বিজয়ের মাসে গণ-আন্দোলনের মধ্য দিয়ে স্বৈরশাসক এরশাদের পতন হয়েছিল। এরপর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে যে গণতান্ত্রিক সরকারের যাত্রা শুরু হয়, তাকে যদি গণতন্ত্রের পুনর্যাত্রা ধরা হয়, ২৩ বছর পর বিজয়ের মাসে এসে সেই যাত্রা কোথায় এসে থমকে দাঁড়িয়ে?২০১৩ সালের শেষে এসে দেশের রাজনীতির হালখাতায় বিভেদ-বিভক্তি, হিংসা-বিদ্বেষ, বলপ্রয়োগ-রক্তক্ষরণ ও অবিশ্বাস-অনিশ্চয়তার যে চিত্র পাওয়া যায়, তা অতীতের যেকোনো সময়ের মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। প্রধান দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে অনেক দিন ধরে চলে আসা হিংসার রাজনীতির সঙ্গে এ বছর যুক্ত হয়েছে জামায়াতে ইসলামীর হিংস্রতা। মুক্তিযুদ্ধের বিরোধিতাকারী দল জামায়াতের যন্ত্রণা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার। বিএনপির লক্ষ্য নির্দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন। আর সরকারের ইচ্ছা রূপকল্প ২০২১। এই ত্রিমুখী স্বার্থের লড়াইয়ে ২০১৩ সালে বিপর্যস্ত পুরো দেশ। শুরু থেকে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ বলে আসছে, উচ্চ আদালতের রায়ের কারণে তত্ত্বাবধায়ক সরকার অবৈধ। অন্যান্য গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে যেভাবে নির্বাচন হয়, সেভাবেই নির্বাচন হবে। সংবিধান থেকে ‘এক চুলও নড়চড় হবে না’।আর প্রধান বিরোধী দল বিএনপির বক্তব্য, উচ্চ আদালতের রায়ে আরও অন্তত দুই মেয়াদে তত্ত্বাবধায়কের কথা বলা হয়েছে। কিন্তু আওয়ামী লীগ ক্ষমতা কুক্ষিগত রাখার জন্য সংসদে সংখ্যাগরিষ্ঠতার জোরে সংবিধান সংশোধন করে তত্ত্বাবধায়ক বাদ দিয়েছে।বছরের শুরুতে ১১ জানুয়ারি জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা স্পষ্ট করে বলে দিয়েছেন, সংবিধানের বাইরে যাবেন না। একই সঙ্গে তাঁর সরকারের উন্নয়ন কর্মসূচি অব্যাহত রাখার জন্য সরকারের ধারাবাহিকতা রক্ষা করা প্রয়োজন বলেও উল্লেখ করেন। তাঁর এ ঘোষণার পর ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে দুই দলের মধ্যে অবিশ্বাস আরও বেড়েছে।জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পদ্ধতি নিয়ে বিবাদের সঙ্গে যুক্ত হয়ে পড়েছে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার। পুরো বছর ধরে সরকার চেয়েছে নির্বাচন ও যুদ্ধাপরাধের বিচারকে একত্র করে প্রধান বিরোধী দলকে চাপিয়ে রাখতে। আর, জামায়াতের সঙ্গে মিত্রতা এবং আন্দোলন কর্মসূচি সফল করতে দলটির ওপর নির্ভরতার কারণে এই বৈরী পরিস্থিতি থেকে বের হওয়াও বিএনপির জন্য অসম্ভব হয়ে পড়ে। ফলে মুখে যতই ‘আন্তর্জাতিকমানের’ যুদ্ধাপরাধের বিচারের কথা বলুক না কেন, এ বিষয়ে দলীয় অবস্থান স্পষ্ট করতে পারেনি বিএনপি।বিএনপি নির্দলীয় সরকারের দাবি মানতে সরকারকে বাধ্য করার ঘোষণা দিয়ে ৩০ জানুয়ারি থেকে গতানুগতিক হরতালের রাজনীতি শুরু করলেও সরকারকে খুব একটা চাপে ফেলতে পারেনি। জোটের শরিক জামায়াতের কর্মীদের সহিংস কর্মকাণ্ড বাদ দিলে বছর ধরে হরতাল-অবরোধ কর্মসূচিতে বিএনপির নেতা-কর্মীদের খুব একটা মাঠে দেখা যায়নি। হরতাল-অবরোধে চোরাগোপ্তা হামলা হয়ে ওঠে কর্মসূচি বাস্তবায়নের প্রধান অনুষঙ্গ। বছরের শেষ দিকে এসে শুরু হয় বাসে-গাড়িতে পেট্রলবোমা মেরে বা আগুন ধরিয়ে মানুষ পুড়িয়ে মারার হিংস্র তৎপরতা।অবশ্য বিএনপির নেতারা অভিযোগ করে আসছিলেন, পুলিশ তাঁদের মিছিল, সভা-সমাবেশের মতো কর্মসূচিও ঠিকভাবে পালন করতে দিচ্ছে না। কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অবরুদ্ধ করে রাখা, সেখানে একাধিকবার অভিযান চালিয়ে শীর্ষস্থানীয় নেতাদের আটকের ঘটনাও ঘটেছে। এমনকি দলটির কোনো কোনো নেতাদের গুম করার অভিযোগও কম নয়।তবে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াত নেতা আবদুল কাদের মোল্লার যাবজ্জীবন রায় প্রত্যাখ্যান করে ৫ ফেব্রুয়ারি শাহবাগে ‘গণজাগরণ’ সৃষ্টির পর কয়েক মাস রাজনীতির দৃশ্যপট থেকে অনেকটা হারিয়ে গিয়েছিল বিএনপি। কিছুদিন জামায়াত থেকে দূরে থাকার কৌশল হিসেবে জোটগত কর্মসূচিও বন্ধ রেখেছিল বিএনপি। এমনকি একপর্যায়ে গণজাগরণ মঞ্চকে স্বাগত জানিয়ে বিবৃতিও দেয় দলটি। যদিও অল্প কদিন পরই এর বিরুদ্ধে বক্তৃতা-বিবৃতি শুরু করেন দলটির নেতারা।২৮ ফেব্রুয়ারি জামায়াত নেতা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ফাঁসির রায় বের হওয়ার পর জামায়াত দেশের বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক সহিংসতা চালায়। এরই মধ্যে ১৩ দফা দাবি নিয়ে ভয়ংকরভাবে দৃশ্যপটে আসে হেফাজতে ইসলাম। কওমি মাদ্রাসাভিত্তিক এই ধর্মীয় গোষ্ঠী ৬ এপ্রিল ঢাকা অভিমুখে লংমার্চ করে রাতারাতি প্রভাবশালী এক শক্তি হিসেবে আবির্ভূত হয়। এরপর ৫ মে ঢাকা অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণা করে তখন প্রধান দুই দলের ক্ষমতাকেন্দ্রিক রাজনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ‘অরাজনৈতিক সংগঠন’ হেফাজতে ইসলাম। ৫ মে হেফাজতের শাপলা চত্বরের কর্মসূচি ঘিরে বিএনপি সরকার পতনের ছক কষছিল বলেও তখন অভিযোগ ওঠে। সমাবেশের দুদিন আগে ৩ মে বিএনপি একই স্থানে সমাবেশ করে এবং ৬ মে থেকে নেতা-কর্মীদের রাজপথে বেরিয়ে আসারও আহ্বান জানিয়েছিল।ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ তখন প্রকাশ্যে হেফাজতের ১৩ দফার বিরুদ্ধে বক্তব্য দিলেও ভেতরে ভেতরে সংগঠনটিকে বাগে আনতে চালিয়েছে নানা তৎপরতা। সরকারের একাধিক দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ও মন্ত্রী ৫ মের আগে দফায় দফায় হাটহাজারী মাদ্রাসায় গিয়ে হেফাজতের আমির শাহ আহমদ শফীর সঙ্গে বৈঠক করেন। ক্ষমতাসীন মহাজোটের শরিক জাতীয় পার্টি হেফাজতের কর্মসূচিকে প্রকাশ্য সমর্থনও দিয়েছিল।অবশ্য বলপ্রয়োগ করে শাপলা চত্বর থেকে হেফাজতকে সরিয়ে দেওয়ার পর আবার কিছুদিনের জন্য চাপে পড়ে বিএনপি। এরপর বিরোধী দলের কর্মসূচিতে শক্তিপ্রয়োগ আরও বাড়িয়ে দেয় সরকার। বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয় অবরুদ্ধ করে রাখে দিনের পর দিন। ধরপাকড়ের মুখে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিবসহ শীর্ষ স্থানীয় নেতাদের কয়েক দফায় আত্মগোপনেও যেতে হয়েছে।১৫ জুন পাঁচ সিটি করপোরেশন ও ৬ জুলাই গাজীপুর সিটি করপোরেশনে সরকারি দলের প্রার্থীদের ভরাডুবির পর বিএনপি নতুন করে উজ্জীবিত হয়। আওয়ামী লীগও নির্দলীয় সরকারের দাবি না মানার ব্যাপারে আরও শক্ত অবস্থানে যায়। তখন রাজনৈতিক অঙ্গনে এ কথাও আসে যে, আওয়ামী লীগ প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে বাদ দিয়ে নির্বাচন করার ছক কষছে। এমনকি বিএনপিকে ভাঙার লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে গোপনে তৎপরতা ছিল। এ লক্ষ্যে বাংলাদেশ ন্যাশনালিস্ট ফ্রন্ট (বিএনএফ) নামে একটি নতুন দলও গঠন করা হয়। বিএনপির একাংশকে দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচনে এনে বিএনএফ থেকে ভোট করানোর সে পরিকল্পনা অবশ্য শেষ পর্যন্ত সফল হয়নি। বিএনএফ এখন টেলিভিশন প্রতীক নিয়ে ২২টি আসনে ভোট করছে।নির্বাচনকালীন সরকার নিয়ে বছরের শুরু থেকেই আলোচনা বা সংলাপের কথা বলা হলেও উভয় পক্ষই যার যার অবস্থানে ছিল অনড়। সংলাপ নিয়ে দুই নেত্রীর ফোনালাপে তাঁদের মধ্যকার বিভেদ-বিদ্বেষ দেশবাসীর কাছে নতুন করে উপস্থাপিত হয়েছে। শেষ পর্যন্ত ৬ ডিসেম্বর জাতিসংঘের রাজনীতিবিষয়ক সহকারী মহাসচিব অস্কার ফার্নান্দেজ তারানকো ঢাকায় এসে দুই পক্ষকে সংলাপে বসাতে সক্ষম হন। তাঁর উপস্থিতিতে দু দফা ও তিনি যাওয়ার পর এক দফা আওয়ামী লীগ ও বিএনপির মধ্যে বৈঠক ছাড়া কার্যত এ সংলাপের আর কোনো অর্জন নাই।অবশ্য সংলাপের আগেই ২৫ নভেম্বর নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা, এক তরফা নির্বাচন, ভোট ছাড়াই ১৫৪ জনের বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হওয়া, এরশাদ ও তাঁর দল জাতীয় পার্টিকে নিয়ে টানাটানি, নাটকীয় কর্মকাণ্ড—সব মিলিয়ে সরকার একটি তামাশার নির্বাচনের দিকে এগোচ্ছে।অপরদিকে বিরোধী দল নির্বাচন প্রতিহত করার ঘোষণা দিয়ে ২৬ নভেম্বর থেকে টানা অবরোধ কর্মসূচি দিয়ে দেশে অচলাবস্থার সৃষ্টি করে। এ সময় চোরাগোপ্তা পেট্রলবোমা ও গাড়িতে আগুন ধরিয়ে মানুষ পুড়িয়ে হত্যার নতুন অধ্যায় শুরু হয়।‘সংবিধান রক্ষা’ ও ‘ভোটাধিকার রক্ষার’ নামে দুই দলের পাল্টাপাল্টি তৎপরতায় জনগণের সুবিধা-অসুবিধাকে বিবেচনায় নেওয়ার গরজ অনুভব করেনি কোনো পক্ষ। এ অবস্থায় সাধারণ মানুষের কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠেন ২৮ নভেম্বর শাহবাগে পেট্রলবোমায় দগ্ধ বাসযাত্রী গৃহবধূ গীতা সেন। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন গীতা সেন ১ ডিসেম্বর হাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে কাছে পেয়ে আকুতি আর ক্ষোভ মিশ্রিত কণ্ঠে বলেন, ‘আপনারা আমাদের নিয়ে ছিনিমিনি খেলছেন।...আমরা অসুস্থ সরকার চাই না..’গীতা সেনের এই আকুতি কি রাজনীতিবিদদের স্পর্শ করেনি। বরং সংবিধান রক্ষার নামে একতরফা নির্বাচনের পথে একরোখা পদযাত্রা এবং জনগণের ভোটাধিকার রক্ষার কথা বলে ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রার’ নামে বছর শেষে দুই জোট শক্তির খেলায় নেমেছে। একই সঙ্গে প্রকট হয়ে উঠেছে মুক্তিযুদ্ধের পক্ষে-বিপক্ষে বিভাজন। প্রশ্ন উঠেছে, মুক্তিযুদ্ধ না গণতন্ত্র—কোনটা অগ্রাধিকার? মানুষের জন্য সংবিধান, নাকি সংবিধানের জন্য মানুষ? সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধান উপদেষ্টা বিচারপতি মুহাম্মদ হাবিবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শ্বাসরুদ্ধকর একটা অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছি। সমাধান কোন দিকে জানি না।’
বালিকাদের ৪০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে সোনা জিতেছে কুষ্টিয়া সাগরখালী সুইমিং ক্লাবের মরিয়ম খাতুন। গড়েছে নতুন জাতীয় রেকর্ড। কুষ্টিয়ার লালন শাহ সুইমিং ক্লাবের নয়ন আলী জিতেছে বালকদের ১০০ মিটার ফ্রি স্টাইলে। বালিকাদের ২০০ মিটার ব্যক্তিগত মিডলেতে সোনাজয়ী রাশেদা খাতুন অংশ নিচ্ছে মেহেরপুর সুইমিং ক্লাবের হয়ে।মরিয়ম, নয়ন, রাশেদারা জাতীয় বয়সভিত্তিক সাঁতারে বিভিন্ন জেলার ও ক্লাবের হয়ে খেললেও শেকড়টা এক জায়গাতেই পোতা। এরা সবাই বগুড়ার। সারা বছর অনুশীলন করে বগুড়ার সাতমাথা পার্ক পুকুরে। অনুশীলন করান মাসুদ রানা ও তাঁর স্ত্রী নীলুফার ইয়াসমিন (সাথী)। এরপর এই সাঁতারুদের ফেরি করে বেড়ান।সাঁতারের আবার ‘ফেরিওয়ালা’ কী? অনেক ক্লাবেরই মানসম্পন্ন সাঁতারু তৈরি করার জন্য বলার মতো কর্মসূচি নেই। টুর্নামেন্টের আগে অন্য ক্লাব থেকে চুক্তিভিত্তিক সাঁতারু নেয় সংশ্লিষ্ট ক্লাবগুলো। আর এমনই একজন সাঁতারের ‘ফেরিওয়ালা’ মাসুদ রানা।মাসুদ নিজে সাঁতারু ছিলেন। সহধর্মিণীও তা-ই। বগুড়া জেলা শহরের সাতমাথা গোয়াল রোডে জ্বালানি তেল বিক্রির একটি দোকানও আছে তাঁদের। তবে সাঁতারু তৈরির নেশাতেই বুঁদ হয়ে আছেন ২২ বছর। এবার ঢাকায় এসেছেন ১৩ জন সাঁতারু নিয়ে। প্রথম দিনেই ৬টি সোনা, ২টি রুপা ও ২টি ব্রোঞ্জ জিতেছে তাঁদের শিষ্যরা। কাল মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্সে দাঁড়িয়ে মাসুদ রানা গর্বভরে বলছিলেন, ‘বিকেএসপির সাঁতারুদের হারিয়ে আমার ছেলেমেয়েরা যখন পুরস্কার নিচ্ছিল, মনে হচ্ছিল, ওটা আমিই নিচ্ছি। আসলে এখানে বাচ্চারা তো খেলে না, আমিও খেলি।’এমন মনে হতেই পারে। এই খুদে সাঁতারুদের পেছনে তো আর কম শ্রম দেননি। এলাকার অভিভাবকেরা তাঁদের ছেলেমেয়েদের সাঁতারে পাঠাতে আগ্রহী নন। অনেক বুঝিয়ে-সুঝিয়ে আনতে হয়। শুধু ‘বুঝিয়ে-সুঝিয়ে’ই হয় না, প্রত্যেকটি ছেলেমেয়ের জন্য দিতে হয় পাঁচ হাজার টাকা। সাঁতারু রাশেদার মায়ের হাতেও টাকা তুলে দিয়ে এসেছেন। অভাবের তাড়নায় রাশেদা মাস দুয়েক আগে বগুড়া শহরে গৃহকর্মীর কাজ করত। রাশেদার মা-ও শহরের মেসবাড়িতে বুয়ার কাজ করেন। বাবা স্টেশনে ফলের দোকানদার। মেয়েকে অনুশীলনে আসতে দিতে চাইতেন না। কাল রাশেদা সোনা জেতার পর মাসুদ রানা বলছিলেন, ‘মাকে জানিয়ে দাও এই খুশির সংবাদ।’ রাশেদার উত্তর ছিল, ‘৬টা সোনা জিতে মাকে জানাব।’ অথচ মা তাকে অনুশীলনে আসতে দিতেন না বলে অভিমানে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করতে গিয়েছিল রাশেদা। ৭২ ঘণ্টা হাসপাতালে কাটানোর পর ফিরেছিল বাড়ি।অভিভাবকদের হাতে এভাবে টাকা তুলে দিয়ে একরকম বাজিই ধরেন মাসুদ। চেষ্টা করেন ওই সাঁতারুকে দিয়ে পদক জেতানোর। নিজের কষ্টের কথা বলতে গিয়ে কেঁদেই ফেললেন মাসুদ, ‘আমি বিভিন্ন ক্লাবে গিয়ে ভিক্ষা চেয়েছি এদের জন্য। বলেছি, এদের আপনার ক্লাবে খেলার সুযোগ দেন। কেউ দেয়নি। বারবার ফিরে এসেছি।’ জানালেন বগুড়া সুইমিং সেন্টার গত দুই বছর তাঁর সাঁতারুদের খেলিয়ে ভালো ফলাফল করলেও প্রতিশ্রুত টাকা দেয়নি। সেই ক্ষোভে এবার তাদের ফিরিয়ে দিয়েছেন।মাসুদ রানা স্বপ্ন দেখেন, একদিন হয়তো তাঁর নিজের সাঁতারের একাডেমি হবে। সেদিন কারও কাছে গিয়ে বলতে হবে না, ‘আমার ছেলেটাকে নেবেন?’আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি তুরিন আফরোজের বাসার সামনে বোমা হামলার নিন্দা জানিয়েছে একাত্তরের ঘাতক দালাল নির্মূল কমিটি। সংগঠনের সভাপতি বিচারপতি মোহাম্মদ গোলাম রাব্বানী, নির্বাহী সভাপতি শাহরিয়ার কবির ও সাধারণ সম্পাদক কাজী মুকুল স্বাক্ষরিত এক বিবৃতিতে গতকাল সোমবার এ নিন্দা জানানো হয়।বিবৃতিতে বলা হয়, বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের হরতাল কর্মসূচিকে ব্যবহার করে জামায়াত-শিবিরের সন্ত্রাসীরা মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত বিচারক, আইনজীবী, মন্ত্রী ও গণমাধ্যমের ওপর সুপরিকল্পিত হামলা চালাচ্ছে। রোববার রাতে ট্রাইব্যুনালে রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি ও নির্মূল কমিটির আইন সম্পাদক তুরিন আফরোজের বাড়ির দরজায় সন্ত্রাসীরা বোমা ছোড়ে। এর আগের দিন প্রধান বিচারপতি, আপিল বিভাগের বিচারপতি ও আইনমন্ত্রীর বাড়ির সামনেও বোমা হামলা হয়েছে। বিবৃতিতে ট্রাইব্যুনাল ও মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারপ্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেকের সার্বিক নিরাপত্তা দান এবং সন্ত্রাসী ও রাষ্ট্রবিরোধী কর্মকাণ্ড কঠোরভাবে দমনের দাবি জানানো হয়।বিবৃতিতে বলা হয়, ‘আমরা নির্মূল কমিটির বিভিন্ন শাখার মাধ্যমে জানতে পেরেছি, ২০০১ সালের মতো নির্বাচনের আগেই বিভিন্ন অঞ্চলে হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর পরিকল্পিত হামলা, নারী নির্যাতন, লুণ্ঠন, জোরপূর্বক চাঁদা আদায় ও হুমকির ঘটনা শুরু হয়েছে। গত দুই দিনে বগুড়া, বরিশাল ও নোয়াখালী থেকে পাওয়া এ ধরনের সংবাদে আমরা উদ্বিগ্ন ও ক্ষুব্ধ।’ বিজ্ঞপ্তি।সরব হয়ে উঠেছেন জনপ্র্রশাসনে দীর্ঘদিন বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি) হয়ে থাকা ও পদোন্নতিবঞ্চিত প্রজাতন্ত্রের কর্মকর্তারা। এ রকম অর্ধশত কর্মকর্তা গতকাল বুধবার মন্ত্রিপরিষদ সচিব ও জনপ্রশাসন সচিবের সঙ্গে আলাদাভাবে দেখা করে পদায়ন ও পদোন্নতির দাবি জানিয়েছেন।এসব কর্মকর্তাকে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত করে ওএসডি এবং পদোন্নতিবঞ্চিত করে রাখা হয়েছে বলে তাঁদের অভিযোগ। তবে কারণ যা-ই হোক, এর আগে এতজন ওএসডি ও পদোন্নতিবঞ্চিত কর্মকর্তার জোটবদ্ধ হয়ে সংশ্লিষ্ট সচিবদের কাছে প্রতিকারের দাবি জানানোর ঘটনা বিরল।এ ঘটনার প্রভাবে গতকাল চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয় রাষ্ট্রীয় প্রশাসনের প্রাণকেন্দ্র সচিবালয়ে। নির্বাচনকালীন সরকার দায়িত্ব নেওয়ার তিন দিনের মধ্যে ওই কর্মকর্তাদের এভাবে সরব ও সক্রিয় হয়ে ওঠা তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করেন অনেকে। এর পাশাপাশি সচিবালয়ের কর্মচারীদের কয়েকটি সংগঠনের নেতারাও গতকাল বিভিন্ন দাবিতে জনপ্রশাসন সচিবের দপ্তরে স্মারকলিপি দেন। অবশ্য এর আগেও তাঁরা একাধিকবার বিভিন্ন দাবি সচিবকে জানিয়েছেন।গতকাল সকাল সাড়ে ১০টায় কর্মকর্তারা প্রথমে জনপ্রশাসন সচিব আবদুস সোবহান সিকদারের দপ্তরে যান। সেখানে তাঁরা সচিবের কাছে তাঁদের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রতিকার দাবি করেন। সচিবকে তাঁরা বলেন, পদোন্নতি পাওয়ার সব যোগ্যতা থাকা সত্ত্বেও তাঁদের কয়েক দফায় বঞ্চিত করা হয়েছে। একই সঙ্গে অনেককে দীর্ঘদিন ধরে ওএসডি করে রাখা হয়েছে। এখন নির্বাচনকালীন অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায়। এই সময়ে যেন তাঁদের পদোন্নতি দেওয়া ও পদায়ন করা হয়। এ সময় সচিব তাঁদের কথা শোনেন এবং বিষয়টি দেখার আশ্বাস দেন বলে কর্মকর্তারা জানান।এরপর কর্মকর্তারা যান মন্ত্রিপরিষদ সচিব মোহাম্মদ মোশাররাফ হোসাইন ভূইঞার দপ্তরে। সেখানেও তাঁরা পদায়ন-পদোন্নতির দাবি করেন।সচিবালয়ের সূত্রগুলো জানায়, এর মাধ্যমে ‘বিএনপি-জামায়াত সমর্থক’ হিসেবে পরিচিত কর্মকর্তারা নিজেদের অবস্থান বোঝাতে চাইছেন। এ ছাড়া অনেকের চাকরি শেষ হওয়ার পথে। সে জন্য তাঁরা পদোন্নতি ও পদায়নের জন্য শেষ চেষ্টা করছেন। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যরা হলেন ওএসডি সচিব ইবাদত আলী, ঢাকার সাবেক জেলা প্রশাসক (যুগ্ম সচিব) আব্দুল বারী, আতাউল হক মোল্লা, বিজন কান্তি সরকার প্রমুখ।একজন ওএসডি যুগ্ম সচিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘দীর্ঘদিন ধরে ওএসডি করে রাখায় সবদিক দিয়েই সমস্যার মধ্যে আছি। এখন যেহেতু নির্বাচনকালীন সরকার ক্ষমতায় এবং প্রধানমন্ত্রীও বলেছেন, পদোন্নতি পাওয়ার যোগ্য কাউকে বঞ্চিত না করার কথা, তাই প্রতিকার চেয়েছি। আশা করি দুই সচিব বিষয়টি বিবেচনা করবেন।’ জানতে চাইলে মন্ত্রিপরিষদ সচিব প্রথম আলোকে বলেন, ‘কর্মকর্তারা দেখা করেছেন। তাঁদের কথা শুনেছি।’ জনপ্রশাসন সচিব বলেন, যাঁরা পদোন্নতি পাননি তাঁদের কিছুসংখ্যক কর্মকর্তা দেখা করতে এসেছিলেন। তাঁদের বলা হয়েছে, যাঁরা যোগ্য তাঁদের বিষয়ে দেখা হবে। অনেক কর্মকর্তাই দেখা করতে আসেন। এটা স্বাভাবিক ঘটনা।জানতে চাইলে সাবেক মন্ত্রিপরিষদ সচিব আলী ইমাম মজুমদার প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটা প্রশাসনের জন্য ভাল লক্ষণ নয়। আমার মতে, ওএসডি ও পদোন্নতি-সংক্রান্ত সমস্যা আগেই সমাধান করা উচিত ছিল। এটি জিইয়ে রাখার কারণে এখন এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।’সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, পাঁচটি সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিরোধী দলের জয়ের পর সচিবালয়ে ‘বিএনপি-জামায়াত সমর্থক’ কর্মকর্তাদের তৎপরতা বাড়ে। তবে বিরোধী দলের সমর্থক হিসেবে চিহ্নিত অনেক কর্মকর্তাকে পদোন্নতি দেওয়ায় তাঁরা চুপ হয়ে যান। কিন্তু কয়েক দিন ধরে আবারও একটি অংশ ভেতরে ভেতরে তৎপরতা চালায়। কিছুদিন আগে সরকারবিরোধী একটি প্রচারপত্র সচিবালয়ে বিতরণ করা হয়। বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট নির্বাচনে না আসায় কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াইয়ের আশা করেছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ফখরুল আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় লড়াইটা মাঠে গড়ায়নি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাজমুল হাসান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যান।জানা গেছে, ভৈরব-কুলিয়ারচর উপজেলা নিয়ে কিশোরগঞ্জ-৬ আসন। এই আসন থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত মো. জিল্লুর রহমান ছয়বার সাংসদ নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর আসনটি শূন্য হলে উপনির্বাচনে তাঁর ছেলে নাজমুল হাসান সাংসদ হন। তবে পৌর মেয়র এবং সংসদ নির্বাচনে দলীয় সমর্থন চেয়ে না পাওয়ার কারণে জিল্লুর রহমান-বলয় থেকে ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। দলীয় সমর্থন না পেয়েও ফখরুল টানা দুবার ভৈরবের মেয়র নির্বাচিত হন। সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি। এর পর থেকে ফখরুল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যক্তিগত প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তাঁকে ঘিরে দলের নেতা-কর্মীদের একটি অংশের বলয়ের সৃষ্টি হয়। তখন থেকে এই আসনটিতে লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফখরুল আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।ফখরুল আলমের সক্রিয় কর্মী আশরাফুল হক বলেন, ‘মহাজোট প্রার্থী জনবিচ্ছিন্ন। তা ছাড়া সারা দেশে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। আর আমাদের প্রার্থীর ব্যক্তিগত প্রচারণা ও অর্জন অনেক। ভোট হলে ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ত।’নাজমুলের সমর্থক কুলিয়ারচর উপজেলার রামদি গ্রামের শামিম মিয়া বলেন, ‘আমাদের নৌকায় ইঞ্জিন লাগানো। স্টার্ট দেওয়ামাত্র গাঙ পার। আর ঢেউয়ে ডুইবা মরত প্রতিদ্বন্দ্বী।’ ফখরুলের সমর্থক ভৈরব শহরের চণ্ডীবের দক্ষিণপারের ইমরান হোসাইন বলেন, ‘৫০ হাজার ভোট বেশি পেয়ে জয়ের সুযোগ হারালাম। ওই আফসোসে এখন ঠিকমতো ঘুম হয় না।’ প্রতিপক্ষের মন্তব্য শুনে ইমরান জানান, আসলে মহজোট প্রার্থীর সমর্থকদের কথাগুলো অন্তরের নয়, মুখের। তাঁরা জানেন, ভোট হলে কী হতো।
আজ আন্তর্জাতিক তথ্য জানার অধিকার দিবস। দিবসটি উপলক্ষে তথ্য কমিশন দেশব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। পৃথক বাণী দিয়েছেন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী।রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ তাঁর বাণীতে বলেন, বিশ্বায়নের এ যুগে সঠিক তথ্য অমূল্য সম্পদ। তথ্যই শক্তি। সহজে ও সুলভে সঠিক তথ্য প্রাপ্তি ও ব্যবহার প্রত্যেক মানুষের নাগরিক ও গণতান্ত্রিক অধিকার। সরকার এ অধিকার নিশ্চিতকরণে বদ্ধপরিকর।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে লাশ নিয়ে ফেনী যাচ্ছিল লাইফ লাইন নামের একটি অ্যাম্বুলেন্স। রোববার দিবাগত রাত তিনটার দিকে সীতাকুণ্ডের বাড়বকুণ্ড এলাকায় পৌঁছালে গাড়ি লক্ষ্য করে ছুটে আসে পাথর। এতে অ্যাম্বুলেন্সটির দুটি কাচ ভেঙে যায়। অ্যাম্বুলেন্সচালক মাহবুব বলেন, ‘ওই অবস্থায় গাড়িটি নিয়ে দ্রুত ওই স্থান ত্যাগ করি।’ ৬০ ঘণ্টার হরতাল চলাকালে গতকাল সোমবার দুপুর পর্যন্ত এভাবে চারটি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর হয়েছে বিভিন্ন স্থানে।এ ছাড়া রোগী নামিয়ে ফেরার পথে গতকাল সোমবার সীতাকুণ্ড ও সাতকানিয়ায় অন্তত চারটি অ্যাম্বুলেন্স আটকে রাখা হয়। এ অবস্থায় চাহিদা থাকা সত্ত্বেও চালকেরা ভয়ে অ্যাম্বুলেন্স চালাচ্ছেন না। এতে দুর্ভোগে পড়েছে রোগী ও স্বজনেরা।গতকাল সোমবার চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সামনে দেখা যায়, যানবাহনের অভাবে রিকশা কিংবা রিকশা ভ্যানযোগে রোগী নিয়ে আসা হচ্ছে। নগরের কালুরঘাটের জোবেদা বেগম নামের এক অন্তঃসত্ত্বাকে আনা হয় ভ্যানযোগে। এর আগের দিন রোববার নগরের স্টেডিয়াম এলাকায় অন্তঃসত্ত্বা নারীকে নামিয়ে সিএনজি অটোরিকশায় অগ্নিসংযোগ করা হয়। এদিকে হরতালের প্রথম দিন রোববার সকালে পশ্চিম পটিয়ার বড় উঠান এলাকায় ভাঙচুর করা হয় আরও একটি লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স (ঢাকা মেট্রো শ-১১-১২৬)। চালক নূর আলম বলেন, ‘আমি বাঁশখালীতে লাশ নিয়ে যাচ্ছিলাম। তারা লাশ দেখল। তার পরও কাচ ও লাইট ভেঙে দেয়।’ একই সময়ে সীতাকুণ্ডের ফৌজদারহাটে ভাঙা হয় নজরুল ইসলামের অ্যাম্বুলেন্স। গাড়িতে তখন রোগী ছিল বলে জানা গেছে।গতকাল দুপুর ১২টার দিকে ফেনী থেকে একজন হূদেরাগীকে নিয়ে চমেক হাসপাতালে আসে একটি অ্যাম্বুলেন্স (চট্ট মেট্রো-ছ-৭১-০১৬৫)। চালক মো. বেলাল বলেন, ‘সীতাকুণ্ড উপজেলার ফৌজদারহাট, ভাটিয়ারী ও বাড়বকুণ্ড এলাকায় তিনবার পিকেটারদের বাধার মুখে পড়ি। তারা গাড়ি ভেঙে দিতে চেয়েছে। রোগী আছে বলার পর কাপড় উল্টে দেখেছে। ক্যাথেডার ও স্যালাইন দেখার পর ছেড়ে দিয়েছে।’ চমেক হাসপাতালের সামনে অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ডে গিয়ে দেখা যায়, ১০-১৫ জন চালক কার্যালয়ে বসে টেলিভিশন দেখছেন। এ সময় ভাড়া করতে এসে তিনজন লোক ফেরত যান। চালকেরা বলেন, ‘বিভিন্ন জায়গায় আমাদের গাড়ি ভাঙা হচ্ছে। আমাদের মারধর করতে চাইছে। তাই ভাড়া নিচ্ছি না।’ হাটহাজারীর মো. শফিক নামের রোগীর এক স্বজন বলেন, ‘আমার রোগী সুস্থ হয়েছে। এখন বাড়ি নিয়ে যাওয়ার জন্য অ্যাম্বুলেন্স চাইছি। কিন্তু পাচ্ছি না।’ চমেক অ্যাম্বুলেন্স স্ট্যান্ডের সভাপতি মোশারফ হোসেন বলেন, ‘অন্য হরতালের সময় ভাঙচুর হয়নি। অ্যম্বুলেন্স চলাচলে বাধাও দিত না। এবার ভাঙচুর হচ্ছে।’ সাতকানিয়ায় দুটি এবং সীতাকুণ্ডে দুটি অ্যাম্বুলেন্স আটকে রেখেছে বলে তিনি জানান।বগুড়াবিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের হরতালে বগুড়ার শেরপুর ও শাজাহানপুরে পিকেটাররা ঢিল ছুড়ে কমপক্ষে ১৫টি অ্যাম্বুলেন্স ভাঙচুর করেন।প্রত্যক্ষদর্শীদের সূত্রে জানা যায়, হরতালের প্রথম দিন রোববার সন্ধ্যার পর ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের শেরপুর ও শাজাহানপুর উপজেলার বিভিন্ন স্থানে পিকেটিং করেন হরতাল-সমর্থকেরা। এ সময় রোগী নিয়ে রাতে উত্তরবঙ্গ থেকে ঢাকায় যাওয়ার পথে কমপক্ষে ১৫টি অ্যাম্বুলেন্সে হামলা চালানো হয়।শেরপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অ্যাম্বুলেন্সের চালক মো. রুহুল বলেন, সন্ধ্যায় বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক মুমূর্ষু রোগীকে ভর্তি করে ফেরার পথে তাঁর গাড়ি হরতাল-সমর্থকদের কবলে পড়ে।শেরপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিনুল ইসলাম বলেন, পার্শ্ববর্তী শাজাহানপুর থানা এলাকায় এসব হামলার ঘটনা বেশি ঘটছে। তাঁর থানা এলাকায় অ্যাম্বুলেন্স বা গাড়ি আটকানো হলে তিনি দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে গাড়িগুলো গন্তব্যে চলে যাওয়ার ব্যবস্থা নিচ্ছেন।আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য চট্টগ্রামে পাঁচ সাংসদসহ ১৮ জন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। গতকাল বুধবার রিটার্নিং কর্মকর্তা এবং উপজেলা কার্যালয় থেকে তাঁরা মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন।মঙ্গলবার দুজন মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছিলেন। মনোনয়ন সংগ্রহকারীদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলেন রাউজানের বর্তমান আওয়ামী লীগদলীয় সাংসদ ফজলে করিম, আনোয়ারা থেকে সাইফুজ্জামান চৌধুরী, চট্টগ্রাম-১১ আসনের এম এ লতিফ, চট্টগ্রাম-৯ আসনের নুরুল ইসলাম বিএসসি ও হাটহাজারী আসনে জাতীয় পার্টির (জাপা) নেতা আনিসুল ইসলাম মাহমুদ।এ ছাড়া নতুন নিবন্ধিত দল বিএনএফের চট্টগ্রাম বিভাগীয় সমন্বয়কারী আরিফ মঈনুদ্দিন কোতোয়ালি আসন থেকে মনোনয়ন নিয়েছেন। একই আসনে নগর আওয়ামী লীগের সহসভাপতি জহিরুল আলম দোভাষও মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন।চট্টগ্রাম-২ আসনে আওয়ামী লীগের পেয়ারুল ইসলাম ও মাহমুদ হাছান, চট্টগ্রাম-৩ আসনে আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান ও তাঁর ভাই মুহাম্মদ জিল্লুর রহমান মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেছেন। চট্টগ্রাম-৬ থেকে ফজলে করিমের পাশাপাশি আওয়ামী লীগের ইকরামুল কবির নামের আরও একজন মনোনয়নপত্র নেন।অন্যদিকে চট্টগ্রাম-৮ চান্দগাঁও-বোয়ালখালী থেকে নগর আওয়ামী লীগের কোষাধ্যক্ষ আবদুচ ছালাম মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। চট্টগ্রাম ১১ থেকে জাতীয় পার্টির মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম, চট্টগ্রাম-১২ আসনে জাপার নুরুছফা সরকার, চট্টগ্রাম-১৩ আসনে জাপার তপন চক্রবর্ত্তী মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন। চট্টগ্রাম-১৫ আসনে মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করেন আওয়ামী লীগের দেলোয়ার হোসেন।রাজধানীসহ সারা দেশে গত শুক্রবার রাত থেকে গতকাল শনিবার বিকেল পর্যন্ত সাড়ে ছয় শ ব্যক্তিকে আটক করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। এঁদের বেশির ভাগকেই বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হচ্ছে।এর আগে গত বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার ভোর পর্যন্ত ঢাকায় আটক করা ব্যক্তিদের মধ্যে ৩০৫ জনকে বিভিন্ন মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে গতকাল ঢাকা মুখ্য মহানগর হাকিমের আদালতে হাজির করা হয়। এঁদের ৫০ জনকে রিমান্ডে নিয়েছে পুলিশ। পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত শুক্রবার গভীর রাতে তেজগাঁওয়ের বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে অন্তত ২০৩ জনকে আটক করে পুলিশ। পুলিশের তেজগাঁও বিভাগের উপকমিশনার (ডিসি) বিপ্লব কুমার সরকার প্রথম আলোকে বলেন, আটক করা ব্যক্তিদের নাম-ঠিকানা যাচাইয়ের পর নির্দোষ প্রমাণ পেলে ছেড়ে দেওয়া হবে। সূত্র জানায়, সদরঘাট টার্মিনালে গতকাল ভোর চারটা থেকে সকাল নয়টা পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা লঞ্চে তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ ১০ যাত্রীকে আটক করে। বৃহস্পতিবার গভীর রাতে মিরপুর থেকে আটক করা ১৩২ জনের মধ্যে কয়েকজনকে মুক্তি দেওয়া হলেও অন্যদের গ্রেপ্তার দেখিয়ে কারাগারে পাঠানো হয়। ওই রাতে পাইকপাড়া থেকে পুলিশ সাবেক কমিশনার রুনু আক্তারের ছেলে, মেয়ে ও বাসার তত্ত্বাবধায়ককে আটক করে। রাতেই ছেলে ও মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হলেও তত্ত্বাবধায়ক সামিউরকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়।একই রাতে মধ্য মণিপুরের বাসা থেকে ঢাকা মহানগর যুবদল উত্তরের সভাপতি মামুন হাসানের ভাই মাহবুব হাসানের স্ত্রী ও দুই মেয়েকে আটক করে পুলিশ। পরদিন তাঁদের জন্য থানায় খাবার নিয়ে গেলে মামুনের বোন আজিজুন্নেছা রুমাকেও আটক করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার রাত ১২টার দিকে মাহবুবের স্ত্রী ও দুই মেয়েকে ছেড়ে দেওয়া হলেও আজিজুন্নেছাকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ২০ জেলায় আটক ৪০৮: রাজধানীর বাইরে ২০ জেলায় অভিযান চালিয়ে ৪০৮ জনকে আটক করা হয়েছে। ঢাকার ধামরাই পৌরসভার মেয়র ও পৌর বিএনপির সভাপতি দেওয়ান নাজিম উদ্দিন, ধামরাই উপজেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. মোহসিন, শ্রমিক দলের সাংগঠনিক সম্পাদক জবেদ আলী, সাভার পৌরসভার কাউন্সিলর ও ঢাকা জেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক খোরশেদ আলমসহ বিভিন্ন পর্যায়ের ২০ নেতা-কর্মীকে আটক করেছে যৌথ বাহিনী।বাগেরহাটে জামায়াত-শিবিরের তিন কর্মী গ্রেপ্তার হন। ১৫ ডিসেম্বর জেলার দেওয়ালবাটি গ্রামে পুলিশের ওপর হামলার মামলায় তাঁদের গ্রেপ্তার দেখানো হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গ্রেপ্তার হয়েছেন বিএনপি-জামায়াতের ১৬ কর্মী। কুমিল্লার বিভিন্ন উপজেলায় আটক হয়েছেন ৩৪ জন। এঁদের মধ্যে বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনের ১৫ জন এবং জামায়াত-শিবিরের ১৯ জন রয়েছেন। খুলনা নগরে আটক হন বিএনপির সাত নেতা-কর্মী। এঁদের মধ্যে সদর থানার ২১ নম্বর ওয়ার্ড বিএনপির সমবায় সম্পাদক শাহীন মুন্সি রয়েছেন।বগুড়ায় যৌথ বাহিনী আরও ৪০ জনকে গ্রেপ্তার করেছে। মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক তোফায়েল আহমদ, উপজেলা যুবদলের সদস্য আনোয়ার হোসেন ও শাহীন আহমদ যৌথ বাহিনীর হাতে আটক হয়েছেন। লালমনিরহাটে গ্রেপ্তার হলেন জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক আনিসুর রহমান। রাজশাহী থেকে ছেড়ে আসা পদ্মা এক্সপ্রেস ও নীলফামারী থেকে আসা নীলসাগর এক্সপ্রেস ট্রেন দুটি গতকাল সকালে টাঙ্গাইলে পৌঁছালে পুলিশ মাইকে ঘোষণা দিয়ে যাত্রীদের নেমে যেতে বলে। পরে সন্দেহজনক ৯৭ যাত্রীকে আটক করা হয়।সাতক্ষীরার কলারোয়ায় গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গ্রেপ্তার হন শিবিরের কর্মী মুকুল হোসেন। গতকাল বিকেলে উপজেলার ক্ষেত্রপাড়ার ঠাকুরবাড়ি এলাকায় যৌথ বাহিনীর সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের সংঘর্ষ চলাকালে তাঁর ডান পায়ে গুলি লাগে। সাতক্ষীরায় সহিংসতার মামলার আসামি জামায়াতে ইসলামীর নেতা সেলিম রেজা মোল্লাকে গোপালগঞ্জ জেলার পুলিশ গতকাল সন্ধ্যায় শহরতলির গোবরা গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে। যশোরে নাশকতার আশঙ্কা ও বিভিন্ন মামলায় ৬২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। ফেনীতে আটক হন বিএনপি-জামায়াতের ১৫ নেতা-কর্মী। এঁদের মধ্যে সদর উপজেলায় ছয়জন, সোনাগাজীতে সাত, পরশুরামে এক ও ফুলগাজীতে একজন। ময়মনসিংহ সদর ও পার্শ্ববর্তী উপজেলাগুলো থেকে বিএনপি-জামায়াতের ২৫ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী। নোয়াখালীর বিভিন্ন উপজেলায় গ্রেপ্তার হন বিএনপি-জামায়াতের ১২ নেতা-কর্মী।ভোলায় ৪০ জন, নাটোরের লালপুরে ১০, চট্টগ্রামের সাতকানিয়ায় পাঁচ ও সীতাকুণ্ডে ১৩, সুনামগঞ্জ শহরে ছয়, লক্ষ্মীপুরের চার উপজেলায় আট, নেত্রকোনা সদর ও পূর্বধলায় ১২ জন জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মী আটক হয়েছেন।
এশিয়া কাপে ব্যর্থতার তদন্ত প্রতিবেদন আজ হকি ফেডারেশনের কাছে জমা দিতে পারে সংশ্লিষ্ট কমিটি। তার আগেই তদন্ত কমিটির সূত্র দিয়ে কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড়ের বিরুদ্ধে গুরুতর অভিযোগ এসেছে একটি পত্রিকায়। যাতে বলা হয়েছে, এশিয়া কাপে খেলোয়াড়েরা মদ খেয়ে অনুশীলনে নামতেন। কয়েকজন সিনিয়র খেলোয়াড় শৃঙ্খলাও ভেঙেছেন। তারই ভিত্তিতে চার সিনিয়র খেলোয়াড়কে নাকি সাময়িক নিষিদ্ধ করার সুপারিশ থাকছে তদন্ত প্রতিবেদনে।পত্রিকায় ওই খবর দেখে চার খেলোয়াড় কাল বিকেলে হকি স্টেডিয়ামে সংবাদ সম্মেলন ডেকেছিলেন। তাঁদেরই অন্যতম স্ট্রাইকার রাসেল মাহমুদ (জিমি) এসব অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানালেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে এসব কথাবার্তা খুবই লজ্জাজনক। পারিবারিক ও সামাজিক জীবনে আমরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছি। রাস্তায় বেরোতে পারছি না।’তদন্ত প্রতিবেদন জমা পড়ার আগেই রায় ঘোষণা কীভাবে হয়—এই প্রশ্ন তুলে জিমির পাল্টা প্রশ্ন, ‘আমরা খেলোয়াড়েরা মদ খেয়ে মাঠে নেমেছি, আমাদের নিয়ে নাকি মদের আড্ডা বসিয়েছেন কোচ মাহবুব হারুন ভাই। এমন কিছুই তো হয়নি। এসব বাজে কথার মানে কী?’বিকেএসপির কোচ কাউসার আলীর নেতৃত্বাধীন তদন্ত কমিটির কাছেই এসব প্রশ্ন জিমির। অবশ্য এই কমিটির ‘নিরপেক্ষতা’ নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি, ‘আমরা নিরপেক্ষ তদন্ত কমিটি করার দাবি জানাই ফেডারেশনের সভাপতির কাছে। সেই কমিটি দোষী সাব্যস্ত করলে আমরা যেকোনো শাস্তি মেনে নেব।’সংবাদ সম্মেলনে জিমির সঙ্গে কামরুজ্জামান, ইমরান হাসান ও জাহিদ হোসেন উপস্থিত থাকলেও মূলত কথা বলেছেন জিমিই। কথা তো নয়, ছুড়লেন এক-একটি সমালোচনার তির। যার একটি গিয়ে লেগেছে প্রধান কোচ নাভিদ আলমের গায়েও, ‘পাকিস্তানি কোচ দল পরিচালনায় যেভাবে ব্যর্থ হলেন, সেই তদন্ত করবে কে?’জিমির প্রশ্ন এবং ক্ষোভ আছে আরও, ‘নির্বাচক কমিটির দুজন (সাবেক দুই খেলোয়াড় মামুনুর রশিদ ও রফিকুল ইসলাম কামাল) তদন্ত কমিটিরও সদস্য। দল নির্বাচন যে ঠিক হয়নি, সেটার তদন্তও চাই। তাঁরাও তো তাহলে ব্যর্থতার অংশ। ১৮ জনের দলে মাত্র দুজন প্রথাগত মিডফিল্ডার নেওয়া হয়েছে। এদের একজন সাব্বির রানাকে তো খেলানোই হয়নি। আমাকে, বিপ্লব, মিমো, নিলয়কে কেন মাঝমাঠে খেলানো হলো? আমরা মাঝমাঠের খেলোয়াড় নই।’দিল্লিতে বিশ্ব হকি লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে তো জিমি সেরা মিডফিল্ডার হয়েছিলেন। তাহলে কেন এশিয়া কাপে মাঝমাঠে খেলানো নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন? জিমির জবাব, ‘দিল্লিতে আমি পুরোপুরি মাঝমাঠে খেলিনি। নিচ থেকে বল নিয়ে যেতে পারি বলে আমাকে সেরা মিডফিল্ডারের পুরস্কার দেওয়া হয়েছে। তবে মূলত আমি ফরোয়ার্ড।’জাতীয় দলে থাকা সার্ভিসেস দলগুলোর খেলোয়াড়দের বিরুদ্ধে কোনো কথা বলা হচ্ছে না কেন, এমন প্রশ্নও তুলেছেন জিমি। উত্তরটাও তাঁর জানা, ‘সার্ভিসেস দলগুলোর সঙ্গে যুক্তরা তদন্ত কমিটিতে আছেন। তাই ওরা সবকিছুর ঊর্ধ্বে। আমরা মোহামেডানে খেলি এবং দলবদলের জন্য আন্দোলন করেছি, এটাই আমাদের অপরাধ।’অভিযুক্ত আরেকজন, গোলরক্ষক জাহিদ ‘ষড়যন্ত্র’ দেখছেন, ‘মদ খাওয়ার ব্যাপারটা সরাসরি আমাদের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র।’ বাকি তিনজনের সুরও তা-ই। টেলিফোনে যোগাযোগ করা হলে মাহবুব হারুনও মদের আসর বসানোর অভিযোগ অস্বীকার করে বললেন, ‘এটা পরিকল্পিত মিথ্যা, বানোয়াট ও সম্মানহানিকর।’১৫ অক্টোবর ছিল বিশ্ব সাদা ছড়ি নিরাপত্তা দিবস। দেশে ঈদুল আজহা ও দুর্গাপূজা উপলক্ষে সরকারি ছুটি থাকায় আজ মঙ্গলবার সাদা ছড়ি নিরাপত্তা দিবস পালন করা হবে। এবার দিবসটির প্রতিপাদ্য নির্ধারণ করা হয়েছে ‘সাদা ছড়ি: বাড়ায় নিরাপত্তা, দেখায় পথ’। ১৯৭৪ সালে জাতিসংঘের সাধারণ পরিষদে ১৫ অক্টোবরকে বিশ্ব সাদা ছড়ি নিরাপত্তা দিবস হিসেবে পালনের সিদ্ধান্ত হয়। ১৯৯৬ সাল থেকে সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের উদ্যোগে দেশে দিবসটি পালিত হচ্ছে।নিজস্ব প্রতিবেদকরাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলার সার্বোয়াতলী ইউনিয়নের শিজক এলাকায় দুর্বৃত্তদের গুলিতে তিনজন নিহত হওয়ার ঘটনায় মামলা করার পাঁচ দিন পরও কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ।এদিকে সঠিক তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত আসামিদের দ্রুত গ্রেপ্তার করে আইনি ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে। গতকাল বুধবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কার্যালয়ে আইনশৃঙ্খলা কমিটির জরুরি সভায় বক্তারা এ দাবি জানান।ইউএনও সুমন চৌধুরীর সভাপতিত্বে সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বিজিবির মারিশ্যা জোনের প্রতিনিধি ক্যাপ্টেন মো. তৌহিদ মোস্তফা, বাঘাইছড়ি পৌর মেয়র মো. আলমগীর, উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান দীপ্তিমান চাকমা, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. রফিক উল্লাহ, কাচালং ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ স্বপন কুমার দে, পৌর বিএনপির সভাপতি নিজাম উদ্দিন, আওয়ামী লীগের সহসভাপতি আবদুল শুক্কুর, প্রেসক্লাবের সভাপতি মো. গিয়াস উদ্দিন।সভায় ওসি জানান, তিনটি খুনের ঘটনায় মামলা হওয়ার পর আসামিরা গা ঢাকা দিয়েছে। একাধিকবার অভিযান চালানো হলেও এখনো কোনো আসামিকে গ্রেপ্তার করা যায়নি। তিনি আরও জানান, পুলিশের গ্রেপ্তার অভিযান অব্যাহত রয়েছে।সূত্র জানায়, সভায় এলাকার সার্বিক আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ও আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতির বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে।প্রসঙ্গত, গত ২১ নভেম্বর শিজক এলাকায় দুর্বৃত্তদের হামলায় সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জনসংহতি সমিতির উপজেলা শাখার সভাপতি শশাঙ্ক মিত্র চাকমা ও সাংগঠনিক সম্পাদক নন্দ কুমার চাকমাসহ তিন ব্যক্তি নিহত হন।বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোট নির্বাচনে না আসায় কিশোরগঞ্জ-৬ আসনে আওয়ামী লীগের দুই প্রার্থীর মধ্যে লড়াইয়ের আশা করেছিলেন দলের নেতা-কর্মীরা। কিন্তু দলের বিদ্রোহী প্রার্থী ফখরুল আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হওয়ায় লড়াইটা মাঠে গড়ায়নি। আওয়ামী লীগের প্রার্থী নাজমুল হাসান বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়ে যান।জানা গেছে, ভৈরব-কুলিয়ারচর উপজেলা নিয়ে কিশোরগঞ্জ-৬ আসন। এই আসন থেকে সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত মো. জিল্লুর রহমান ছয়বার সাংসদ নির্বাচিত হন। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পর আসনটি শূন্য হলে উপনির্বাচনে তাঁর ছেলে নাজমুল হাসান সাংসদ হন। তবে পৌর মেয়র এবং সংসদ নির্বাচনে দলীয় সমর্থন চেয়ে না পাওয়ার কারণে জিল্লুর রহমান-বলয় থেকে ভৈরব উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ফখরুল আলম বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েন। দলীয় সমর্থন না পেয়েও ফখরুল টানা দুবার ভৈরবের মেয়র নির্বাচিত হন। সর্বশেষ নির্বাচনে জয়ী হতে পারেননি। এর পর থেকে ফখরুল জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে ব্যক্তিগত প্রচারণা চালিয়ে আসছেন।দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দল থেকে মনোনয়ন না পেয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে মনোনয়নপত্র দাখিল করেন। তাঁকে ঘিরে দলের নেতা-কর্মীদের একটি অংশের বলয়ের সৃষ্টি হয়। তখন থেকে এই আসনটিতে লড়াইয়ের সম্ভাবনা তৈরি হয়। কিন্তু পরবর্তী সময়ে ফখরুল আলমের মনোনয়নপত্র বাতিল হয়ে যায়।ফখরুল আলমের সক্রিয় কর্মী আশরাফুল হক বলেন, ‘মহাজোট প্রার্থী জনবিচ্ছিন্ন। তা ছাড়া সারা দেশে আওয়ামী লীগ সাংগঠনিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েছিল। আর আমাদের প্রার্থীর ব্যক্তিগত প্রচারণা ও অর্জন অনেক। ভোট হলে ক্ষোভের আগুনে ঘি পড়ত।’নাজমুলের সমর্থক কুলিয়ারচর উপজেলার রামদি গ্রামের শামিম মিয়া বলেন, ‘আমাদের নৌকায় ইঞ্জিন লাগানো। স্টার্ট দেওয়ামাত্র গাঙ পার। আর ঢেউয়ে ডুইবা মরত প্রতিদ্বন্দ্বী।’ ফখরুলের সমর্থক ভৈরব শহরের চণ্ডীবের দক্ষিণপারের ইমরান হোসাইন বলেন, ‘৫০ হাজার ভোট বেশি পেয়ে জয়ের সুযোগ হারালাম। ওই আফসোসে এখন ঠিকমতো ঘুম হয় না।’ প্রতিপক্ষের মন্তব্য শুনে ইমরান জানান, আসলে মহজোট প্রার্থীর সমর্থকদের কথাগুলো অন্তরের নয়, মুখের। তাঁরা জানেন, ভোট হলে কী হতো।
রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে অঝোরে কাঁদছেন জাহিদ আল লতিফ ও তাঁর স্ত্রী শামসুন নাহার ফেরদৌসী। একমাত্র ছেলে বখতিয়ার লতিফ হত্যার ঘটনায় একদিকে তাঁরা যেমন শোকাহত-আতঙ্কিত, অন্যদিকে চরম হতাশ। কারণ আট দিন হয়ে গেলেও এখনো পর্যন্ত জড়িত কাউকে গ্রেপ্তার করতে পারেনি পুলিশ। তাই ছেলে হত্যার বিচার চাইতে এ দম্পতি নেমে এসেছেন রাস্তায়। তাঁদের সঙ্গে যোগ দিয়েছেন বখতিয়ারের বন্ধু-বান্ধব ও আত্মীয়স্বজন। ব্যানার আর প্ল্যাকার্ড নিয়ে দাঁড়িয়ে মানববন্ধন করে হত্যাকারীদের দ্রুত গ্রেপ্তারের দাবি জানিয়েছেন তাঁরা। গতকাল শুক্রবার এ মানববন্ধন হয়। গত ১২ সেপ্টেম্বর গভীর রাতে রাজধানীর উত্তর যাত্রাবাড়ীতে বাসায় ঢুকে এ লেভেল পড়ুয়া বখতিয়ারকে গুলি করে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা। এ ঘটনায় নিহত ছাত্রের বাবা জাহিদ বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামিদের বিরুদ্ধে ডাকাতিসহ খুনের অপরাধে মামলা করেন। মামলার এজাহার অনুযায়ী, ডাকাতির উদ্দেশে কয়েকজন যুবক বাসায় ঢুকে বখতিয়ারকে গুলি করে। ডাকাতের দল বেশকিছু স্বর্ণালংকারও নিয়ে যায়। ঘটনার পর পুলিশ ওই বাসার গৃহকর্মী মোছাম্মত চম্পার স্বামী মো. রাসেলকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য নিয়ে যায়। গত ১৪ সেপ্টেম্বর মামলাটি ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (ডিবি) কাছে হস্তান্তর করা হয়। তবে এখন পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার হয়নি। মানববন্ধনে দাঁড়িয়ে চোখের পানি ফেলে শামসুন নাহার বললেন, ‘আমার সামনে আমার ছেলেটাকে গুলি করে মারা হলো। এখন আমি ছেলে হত্যার সুষ্ঠু বিচার চাই।’ বখতিয়ারের বাবা জাহিদ বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি পুলিশ চাইলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যেকোনো অপরাধীকে ধরতে পারে। কিন্তু আমার ছেলের হত্যার ঘটনায় এখনো পর্যন্ত কেউ গ্রেপ্তার না হওয়ায় আমার এ বিশ্বাস নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।’ তিনি বলেন, ‘পুলিশকে ফোন করলে বলে, কাজ করছি। আমরা এখনো আশ্বাসের ওপরই আছি।’ ‘মায়ের বেডরুমে একমাত্র সন্তান খুন, সন্তান নিরাপদ কোথায়?’, ‘বখতিয়ার হতে পারত আপনার পরিবারের কেউ’—এ ধরনের লেখাসংবলিত প্ল্যাকার্ড নিয়ে মানববন্ধনে অংশ নেন বখতিয়ারের স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবেরা। মানববন্ধন শেষে বখতিয়ারের ফুফু সাংবাদিক শারমিন রিনভী বলেন, পুলিশ এখন তাঁদের সঙ্গে কোনো যোগাযোগ করছে না। ফোন করলেও ধরছে না। কী তদন্ত হচ্ছে, কোনো কিছু জানা গেল কি না—এসব ব্যাপারে কোনো তথ্য পাচ্ছেন না তাঁরা।জানতে চাইলে ডিবির (পূর্ব) উপকমিশনার জাহাঙ্গীর হোসেন মাতুব্বর প্রথম আলোকে বলেন, ‘পরিবারের পক্ষ থেকে এ ঘটনায় কাউকে সন্দেহ করা হয়নি। সেই হিসেবে এটি একটি সূত্রহীন ঘটনা। তদন্ত করে শতভাগ নিশ্চিত হওয়ার পর আমরা গ্রেপ্তার অভিযান চালাব। তদন্ত অনেকদূর এগিয়ে গেছে। আশা করি দ্রুত সাফল্য আসবে।’আইয়ুব আলী জানেন না, ঠিক কী কারণে হরতাল ডাকা হয়েছে। কিন্তু তাঁর কোনো উপায় ছিল না। গাড়ি না চালালে যে সংসার চলবে না। তাই গাড়িসহ পুড়তে হয়েছে তাঁকে।হরতালে কাজে যাওয়া ছাড়া উপায় থাকে না দিন এনে দিন খাওয়া মানুষগুলোর। তাঁদের ওপরই পড়ছে হরতালের আগুন আর ককটেল। পরিবারের প্রধান রোজগেরে লোকগুলো আহত হওয়ায় একদিকে কাজ বন্ধ, আয় বন্ধ, অন্যদিকে চিকিৎসা খরচ। সব মিলিয়ে শারীরিক কষ্টের পাশাপাশি আর্থিক কষ্টও তাঁদের কুরে কুরে খাচ্ছে।তাঁদের একজন সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক আইয়ুব আলী (৪১)। গত রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে রাজধানীর শাহজাহানপুর এলাকায় সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ছুড়ে দেওয়া পেট্রলবোমায় ঝলসে যায় তাঁর বুকের নিচ থেকে তলপেট ও বাঁ পা। পুড়ে যায় মুখমণ্ডলও। ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, তাঁর শরীরের ১০ শতাংশ পুড়ে গেছে। সুস্থ হতে অন্তত দুই সপ্তাহ সময় লাগবে।গতকাল বিকেলে বার্ন ইউনিটের চতুর্থ তলার মেঝেতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কথা হয় তাঁর সঙ্গে। বুকের নিচ থেকে ব্যান্ডেজ। মুখমণ্ডলে মলম লাগানো।আইয়ুব বলেন, ‘দুই-তিনটা পোলা থামার সিগন্যাল দিলো। আমি মনে করছি, রুগি নিয়া যাইতাছে। আমি থামলাম। দেহি পিছনে পেট্রল ঢালতাছে। আমি দিলাম জোরে টান। ওই সময়ই একটা বোম মারলো, গাড়িতে আগুন ধইরা গেলো।’পাশে থাকা তাঁর স্ত্রী পারুলী বেগম বলেন, প্রতিদিন আট শ টাকা জমার ভিত্তিতে সপ্তাহে পাঁচ দিন গাড়ি চালান আইয়ুব। সেই টাকাতেই চলে তাঁদের পাঁচ সদস্যের সংসার। হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকেই ওষুধ, পথ্য, যাতায়াত আর মুঠোফোনের খরচ মিলিয়ে হাতে টান পড়েছে। নন্দীপাড়ার টিনশেড বাসার ভাড়া, ছেলে-মেয়েদের খরচ, চিকিৎসা খরচ—সব মিলিয়ে চোখে অন্ধকার দেখছেন পারুলী।হরতালকারীদের ছুড়ে মারা ককটেলে রংমিস্ত্রি আবদুর রহমান (৪৫) বাঁ চোখ হারিয়েছেন। তাঁকে ভর্তি করা হয়েছে রাজধানীর আগারগাঁওয়ের চক্ষুবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটে। গতকাল সন্ধ্যায় গিয়ে দেখা যায়, বাঁ চোখে ব্যান্ডেজ নিয়ে শুয়ে ফুঁপিয়ে কাঁদছেন রহমান। শার্টে রক্ত লেগে আছে। পাশে বসা মেজো মেয়ে জান্নাতুল ফেরদৌস বাবাকে জড়িয়ে ধরে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করছেন।রহমানের সহকর্মী জালাল হোসেন বলেন, তাঁরা একসঙ্গে রংমিস্ত্রির কাজ করেন। প্রতিদিনের মতো কাজের খোঁজে গতকালও এসেছিলেন রায়সাহেব বাজার মোড়ে। ৫০-৬০ জন দিনমজুর দাঁড়িয়ে ছিলেন। তাঁরা কয়েকজন বসে ছিলেন। হঠাৎই পর পর দুটি ককটেল বিস্ফোরিত হয় রহমানের পাশে। সঙ্গে সঙ্গে রহমানের বাঁ চোখ দিয়ে রক্ত পড়া শুরু হয়।আহত শ্রমিকের ভাই রফিকুল বলেন, রহমান দিনের রোজগারের জন্যই বের হয়েছিলেন। এখন চিকিৎসকেরা বলছেন, তাঁর অস্ত্রোপচার করতে হবে। যদিও বেশির ভাগ ওষুধ হাসপাতাল থেকে দেওয়া হচ্ছে। কিন্তু অস্ত্রোপচারের কিছু উপকরণ বাইরে থেকে কিনতে হবে। সেটিই তাঁরা এখন জোগাতে পারছেন না।রহমানের দুই মেয়ে ও এক ছেলের মধ্যে বড় মেয়ে দুটির বিয়ে হয়েছে। স্কুলপড়ুয়া ছোট ছেলে ও স্ত্রী পটুয়াখালীর দশমিনায় গ্রামের বাড়িতে থাকেন। রহমান থাকেন জিঞ্জিরায়, মেসে।গত শনিবার সন্ধ্যায় মোহাম্মদপুরে বেড়িবাঁধে পোশাক কারখানার কর্মী বহনকারী একটি বাসে অগ্নিসংযোগ করা হলে নাসিমা বেগম নামের একজন পোশাককর্মী দগ্ধ হন। ঢাকা মেডিকেল কলেজের বার্ন ইউনিটে চিকিৎসাধীন নাসিমার শরীরের ৪০ ভাগেরও বেশি অংশ পুড়ে গেছে। তাঁকে এখন নল দিয়ে খাবার দেওয়া হচ্ছে।নাসিমা জানান, সম্প্রতি তাঁর স্বামী দ্বিতীয় বিয়ে করায় তিনি বড় বোন রহিমার সঙ্গে রায়েরবাজার এলাকায় থাকা শুরু করেন। কাজ নেন মোহাম্মদপুরের নিউ ডেল্টা অ্যাপারেলস কারখানায়। প্রতিদিন কারখানার বাসে যাতায়াত করতেন। শনিবার সন্ধ্যায় কাজ শেষে বাসায় যাওয়ার সময় তিনি বাসের ডান দিকে মাঝামাঝি জানালার পাশের আসনে বসে ছিলেন। কিছুক্ষণ চলার পরই হঠাৎ জানালা দিয়ে কেউ পেট্রল ছুড়ে মারে। পাশ থেকেই কেউ একজন ছুড়ে মারে দেশলাইয়ের জ্বলন্ত কাঠি। সরে যাওয়ার আগেই জ্বলে ওঠে আগুন। সহকর্মীরা এসে আগুন নেভানোর আগেই পুড়ে যান নাসিমা। এখন শারীরিক যন্ত্রণার পাশাপাশি রয়েছে টাকাপয়সার টানাটানিও। বোন-দুলাভাইয়ের সংসারে তাঁকে নিজেরটা নিজেই জোগাতে হয়েছে। এখন কীভাবে চিকিৎসা হবে, কোত্থেকে খাওয়া-থাকার খরচ আসবে, তা তিনি জানেন না।মুখে সংলাপ-সমঝোতার কথা বলা হলেও এখন পর্যন্ত প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠানের পুরোনো ছকে এগোচ্ছে সরকার। তবে বিরোধী দলের টানা অবরোধ কর্মসূচিতে গত দুই দিন দেশব্যাপী ব্যাপক সহিংসতায় সরকারের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।পরিস্থিতি সামাল দিয়ে শেষ পর্যন্ত একতরফা নির্বাচন অনুষ্ঠান করা সম্ভব হবে কি না, তা নিয়ে সরকার ও আওয়ামী লীগের উচ্চপর্যায়ের অনেকে চিন্তায় পড়েছেন বলেও একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বর্তমান মন্ত্রিসভার একজন জ্যেষ্ঠ সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, আগামী এক সপ্তাহ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কী হবে, এই মুহূর্তে স্পষ্ট করে বলা যাচ্ছে না।বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের টানা অবরোধে সড়ক ও রেলযোগাযোগ ভেঙে পড়ায় কার্যত দেশ অচল হয়ে পড়েছে। আজ সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত অবরোধ কর্মসূচি বাড়ানো হয়েছে। উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে গত মঙ্গলবার রাতে গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা দলের জ্যেষ্ঠ নেতা ও মন্ত্রীদের নিয়ে বৈঠক করেন। বৈঠকে ভূমি ও ত্রাণমন্ত্রী আমির হোসেন আমু, শিল্প ও পূর্তমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ, স্থানীয় সরকারমন্ত্রী সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য কাজী জাফরউল্যাহ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। বৈঠকে বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচিতে দেশব্যাপী সহিংসতা মোকাবিলার বিষয়ে আলোচনা হয়। কিছু প্রশাসনিক সিদ্ধান্ত ও পদস্থ কর্মকর্তাদের দিকনির্দেশনা দেওয়া হয় বলে সংশ্লিষ্ট একাধিক সূত্র থেকে জানা গেছে।সাবির্ক পরিস্থিতি নিয়ে গতকাল আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকেও নেতাদের মধ্যে আলোচনা হয়। বিশেষ করে রেলপথে সহিংসতা এবং দুই দিনে বিজিবির সদস্যসহ ১৬ জনের প্রাণহানি নিয়েও কথাবার্তা হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে প্রশাসনিক কঠোর পদক্ষেপের ওপর গুরুত্বারোপ করেন নেতারা।এ বিষয়ে গতকাল সরকারের বর্তমান ও সদ্য বাদ পড়া কয়েকজন মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের বিভিন্ন পর্যায়ের দায়িত্বশীল কয়েকজন নেতার সঙ্গে এই প্রতিবেদকের কথা হয়। তাঁরা জানান, এত দিন ধরে বিরোধী দলের রাজপথের আন্দোলন সরকারকে খুব একটা চাপে ফেলতে পারেনি। কর্মসূচিগুলোতে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির নেতা-কর্মীদের অংশগ্রহণও ছিল নগণ্য। ফলে সরকার ও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারণী পর্যায়ে ধারণা ছিল, আন্দোলন করে বিএনপি নির্বাচন ঠেকাতে পারবে না। তাই বিরোধী দলের সঙ্গে সংলাপ-সমঝোতার বিষয়টিকে গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। কেবল মুখরক্ষার জন্যই দলের নেতারা সংলাপ বা আলোচনার কথা বলে আসছেন। কিন্তু গত দুই দিনে বিরোধী দলের অবরোধ কর্মসূচিতে দেশব্যাপী অচলাবস্থা ও আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি ভেঙে পড়েছে। কিছু কিছু এলাকায় প্রশাসনিক নিয়ন্ত্রণ কমে গেছে। এতে সরকারের শীর্ষ পর্যায়ের ব্যক্তিরা কিছুটা চিন্তিত হয়ে পড়েছেন।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের একজন সদস্য প্রথম আলোকে বলেন, পরিস্থিতি ভালো মনে হচ্ছে না। আর সদ্য বাদ পড়া একজন মন্ত্রী বলেন, সারা দেশে সহিংসতা, জনমনে আতঙ্ক—সব মিলিয়ে বিষয়টা ভালো ঠেকছে না।তবে গত দুই দিনের ঘটনায় সরকার উদ্বিঘ্ন হলেও একতরফা নির্বাচনের চিন্তা থেকে সরে আসেনি। বিএনপিকে ছাড়াই নির্বাচন অনুষ্ঠানের লক্ষ্যে আগের ছক অনুযায়ী এগোচ্ছে বলে সরকারের উচ্চপর্যায়ের একধিক সূত্র জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল আওয়ামী লীগের সংসদীয় বোর্ডের বৈঠকে সূচনা বক্তব্যে নির্বাচন নিয়ে তাঁর কঠোর অবস্থানের কথাই পুনর্ব্যক্ত করেছেন। তিনি বিরোধীদলীয় নেতাকে এক-এগারোর ঘটনা এবং সংবিধানের ৫৭(৩) অনুচ্ছেদের কথা স্মরণ করিয়ে দেন।প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতা হস্তান্তরসংক্রান্ত সংবিধানের এই অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রধানমন্ত্রীর উত্তরাধিকারী কার্যভার গ্রহণ না করা পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীকে স্বীয় পদে বহাল থাকিতে এই অনুচ্ছেদের কোনো কিছুই অযোগ্য করিবে না।’অবশ্য শেখ হাসিনার অধীনে নির্বাচনে না যাওয়ার ব্যাপারে বিএনপির চূড়ান্ত রাজনৈতিক অবস্থানের বিষয়টিও আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারকেরা অবগত আছেন। তার পরও আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতারা জানান, নির্বাচনকালীন সরকারপ্রধানের পদে শেখ হাসিনাই থাকবেন, এটাই আওয়ামী লীগের চূড়ান্ত অবস্থান। বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা বা সংলাপ যা-ই হোক, আওয়ামী লীগ এই রাজনৈতিক অবস্থান থেকে নড়বে না। শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী রেখেই আওয়ামী লীগের নেতারা অন্যান্য বিষয় নিয়ে বিরোধী দলের সঙ্গে আলোচনা করতে রাজি আছেন।জানতে চাইলে আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের দাবি করেন, আওয়ামী লীগ সব দলকে নিয়েই নির্বাচনে যেতে চায়। সমাধান হবে না, তা এখনো বলা যাচ্ছে না।নামের পাশে বাংলাদেশের পতাকা দেখতে ভালোবাসেন তিনি। সেই লাল-সবুজ উড়িয়েছেন এবার বিশ্বকাপে। গলফের বিশ্বকাপে খেলা প্রথম বাংলাদেশি সিদ্দিকুর রহমান। বছরের শুরুটা যেমনই হোক, শেষ দিকে পেয়েছেন অসাধারণ সাফল্য। নভেম্বরে অস্ট্রেলিয়ায় বিশ্বকাপে খেলতে যাওয়ার আগেই ক্যারিয়ারের দ্বিতীয় পেশাদার শিরোপা জিতেছেন দিল্লিতে।ফুটবল-ক্রিকেটের বাইরে আলোচনায় সবার ওপরেই ছিল সিদ্দিকুরের নাম। গলফে এই সাফল্যের আগে বারবার নেতিবাচক শিরোনামে এসেছে হকি। বছর ঘুরতে না-ঘুরতেই সাফল্যের ছবিগুলো উধাও! অথচ বিশ্ব হকি লিগের দ্বিতীয় রাউন্ডে জিমিদের চীন-বধ, তৃতীয় হয়ে দেশে ফেরাটা আশা জাগিয়েছিল সবাইকে। কিন্তু এশিয়া কাপে ব্যর্থতার ষোলোকলা পূর্ণ করে আট দলের মধ্যে হয় সপ্তম। ঘরোয়া হকিতে নিয়ন্ত্রিত নির্বাচন বর্জন করে মোহামেডান জোটভুক্ত ক্লাবগুলো। এশিয়া কাপের আবাসিক ক্যাম্পের আগে দলবদলের দাবিতে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে হকি অঙ্গন। খেলোয়াড়দের বোঝাতে গিয়ে লাঞ্ছিত হন কোচ নাভিদ আলম। এরই জেরে বিভিন্ন মেয়াদে নিষিদ্ধ হন সাবেক খেলোয়াড় রাসেল খান, আরিফুল হক, শামসুদ্দিন তুহিন, আশিকুজ্জামান ও আসাদুজ্জামান চন্দন। মুঠোফোনে রাসেল মাহমুদ জিমিকে হত্যার হুমকি দেওয়ায় নিষিদ্ধ হন আবাহনীর হকি কর্মকর্তা শহীদুল্লাহ দোলন। আর এশিয়া কাপ হকিতে ব্যর্থতার জন্য গড়া তদন্ত কমিটির সুপারিশে বিভিন্ন মেয়াদে নিষিদ্ধ হয়েছেন জিমি, জাহিদ, ইমরান ও কামরুজ্জামান। এতসব বাজে খবরের ভিড়ে একটা সুসংবাদ—সিঙ্গাপুরে যুব এশিয়া কাপে অনূর্ধ্ব-১৬ হকি দলের রানার্সআপ হওয়া। এতে যুব অলিম্পিকে সরাসরি খেলারও সুযোগ পায় তারা।ঘরোয়া খেলাধুলায় অনেক দিন পর আলোচনায় আসে বাংলাদেশ গেমস। প্রায় ভুলতে বসা গেমসটা আয়োজনের চ্যালেঞ্জ নিয়েছিল বাংলাদেশ অলিম্পিক অ্যাসোসিয়েশনের (বিওএ) নতুন নির্বাচিত কমিটি। ১১ বছর পর সফলভাবেই শেষ হয় অষ্টম বাংলাদেশ গেমস। তবে সফল আয়োজনে একটু কালি ছিটিয়েছে কাবাডিতে রক্তারক্তি কাণ্ড!অ্যাথলেটিকস ট্র্যাকে ঝলক দেখিয়েছেন দুই নবীন—আবু রায়হান ও জাকিয়া সুলতানা। অভিজ্ঞ নাজমুন নাহার বিউটির পাশে ছিলেন চোখে স্বপ্ন এঁকে উঠে আসা মেজবাহ আহমেদ। গেমসে সাঁতারে ৪০০ মিটার ফ্রি-স্টাইলে ১৯ বছরের রেকর্ড ভেঙেছেন মাহফিজুর রহমান সাগর। অনেক দ্বিধার পর অবসরে গেছেন শ্যুটার সাবরিনা সুলতানা। ব্যাডমিন্টনে ছিল নতুন চমক। ১৫ বছর বয়সে দেশের সেরা খেলোয়াড়দের হারিয়ে পুরুষ এককের সোনা জিতেছেন আইমান ইবনে জামান।দাবায় সাফল্যের চেয়ে ব্যর্থতার খবরই বেশি। এশিয়ান জোনাল দাবার উন্মুক্ত বিভাগে গ্র্যান্ডমাস্টার জিয়াউর রহমান, মহিলা বিভাগে শামীমা আক্তার লিজা চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। নর্ম পেয়ে দেশের সর্বকনিষ্ঠ ফিদে মাস্টার হয়েছে ফাহাদ রহমান। তবে এসব ছাপিয়ে ‘আদম পাচারে’র ঘটনায় কলঙ্কিত হয়েছে দাবা।শ্যুটিংয়ে কোনো আন্তর্জাতিক সাফল্য নেই। আর্চারির একমাত্র সাফল্য—ইন্দোনেশিয়ায় ইসলামিক সলিডারিটি গেমসে ইমদাদুল হক মিলনের রুপা। সেখানেই তায়কোয়ান্দোতে শ্রাবণীর ব্রোঞ্জ। আর ঢাকায় আমন্ত্রণমূলক দক্ষিণ এশীয় বাস্কেটবলে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে বাংলাদেশ।এ বছর বুদ্ধিপ্রতিবন্ধী খেলোয়াড়দের সাফল্য ছিল নজরকাড়া। দক্ষিণ কোরিয়ায় স্পেশাল অলিম্পিকের শীতকালীন গেমসের ফ্লোর হকিতে সোনা জেতে বাংলাদেশ। অস্ট্রেলিয়ায় স্পেশাল অলিম্পিক এশিয়া প্যাসিফিক গেমসে বাংলাদেশ জেতে ৭৭টি সোনা। এ বছর ক্রীড়াঙ্গন হারিয়েছে অনেক খেলোয়াড়-কর্মকর্তাকেও। মাত্র ১৭ বছর বয়সে না-ফেরার দেশে পাড়ি দিয়েছেন শাটলার আবদুল মোমেন। চিরবিদায় নিয়েছেন জাতীয় হকি দলের সাবেক খেলোয়াড় মালেক চুন্নু, ধারাভাষ্যকার মোহাম্মদ মুসা, রোয়িং ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আওয়াল মজনু ও ক্রীড়া সংগঠক গোলাম রসুল মোল্লা।
একজন ফুটবলযুদ্ধের কৌশল-গুরু। অন্যজন ছিলেন তাঁর প্রিয় শিষ্য। যেন দ্রোণাচার্য আর অর্জুন। কিন্তু সবকিছু ছাপিয়ে তাঁরা ছিলেন খুব ভালো বন্ধুও।হোসে মরিনহো আর আন্দ্রে ভিলাস-বোয়াস। পোর্তো, চেলসি আর ইন্টার মিলানে দুই ফুটবল-মস্তিষ্কের প্রায় সাত বছরের জুটি। এরপর ‘দুজনার দুটি পথ দুটি দিকে গেছে বেঁকে...।’ এতটাই যে, হোয়াইট হার্ট লেনে আজ ‘দ্রোণাচার্য’ মরিনহোর চেলসির মুখোমুখি হওয়ার আগে রীতিমতো বাক্যবাণ ছুড়ছেন ‘অর্জুন’ টটেনহাম কোচ ভিলাস-বোয়াস! ‘গুরু-মারা বিদ্যা’ কি একেই বলে?একে তো লন্ডনের পশ্চিম আর উত্তরের দুই ক্লাবের দ্বৈরথ। তার ওপর একসময়ের ‘মানিকজোড়’ পেশাদার জীবনের বাস্তবতায় আজ প্রথমবারের মতো প্রতিপক্ষ। গোল, পাস, আক্রমণ-পাল্টা আক্রমণ এসব তো মাঠের লড়াইয়ে দেখা যাবেই। কিন্তু এর বাইরে ‘বন্ধু থেকে শত্রু’ দুই কোচের যে মনস্তাত্ত্বিক লড়াই, হোয়াইট হার্ট লেনে আজ বাড়তি আকর্ষণ সেটাই।আজকের ম্যাচে প্রতিপক্ষ বলেই চিরশত্রু হয়ে গেছেন, ঠিক এ কথা বলা যাবে না। তবে দুজনের বন্ধুত্ব যে আগের মতো নেই, সেটা নিজের মুখেই স্বীকার করেছেন ভিলাস-বোয়াস, ‘আমাদের মধ্যে দারুণ পেশাদারি ও ব্যক্তিগত সম্পর্ক ছিল। কিন্তু সম্পর্কটা ভেঙে গেছে। পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ আছে আগের মতোই। কিন্তু বোঝাপড়াটা আর আগের মতো নেই।’কেন নেই, সেটা এক দশক ধরে যাঁরা এই দুজনকে দেখে আসছেন, তাঁদের কিছুটা জানাই আছে। ১৯৯৪ সালে স্যার ববি রবসন যখন পোর্তোর দায়িত্ব নেন, মরিনহো তখন ইংলিশ কোচের দোভাষী। ভিলাস-বোয়াস তখন কিশোর। পোর্তোয় রবসন যে বাসায় থাকতেন, তার কাছাকাছি থাকতেন তিনিও। ভিলাস-বোয়াসের দারুণ ফুটবল-মস্তিষ্কের প্রমাণ পেয়ে রবসন নিজ উদ্যোগেই তাঁকে পেশাদার কোচিং কোর্সে পাঠালেন ইংল্যান্ডে। সেখান থেকে সনদ নিয়ে পুরোদস্তুর কোচ হয়ে ভিলাস-বোয়াস যখন পর্তুগালে ফিরলেন, তত দিনে ঠিকানা বদল হয়ে গেছে রবসনের। পোর্তোর দায়িত্ব তখন মরিনহোর কাঁধে। তিনি সানন্দেই ভিলাস-বোয়াসকে নিয়ে নিলেন নিজের সহকারী হিসেবে। সেটা ২০০২ সালের কথা। পরের সাত বছর এই জুটির পোর্তো, চেলসি আর ইন্টার মিলানে ঈর্ষণীয় সাফল্য। সহকারীর এতটাই গুণমুগ্ধ হয়ে গিয়েছিলেন মরিনহো, অনেকবারই প্রকাশ্যে বলেছেন, ‘সে-ই (বোয়াস) আমার চোখ-কান।’তবে সহকারী হলেও নিজের একটা আলাদা পরিচিতি তৈরি করার ইচ্ছা সব সময়ই ছিল ভিলাস-বোয়াসের। তিনি চাইতেন আরও বড় কোনো দায়িত্ব। মরিনহোর সঙ্গে থেকে সেটা আর সম্ভব হচ্ছিল না। ২০০৯ সালে মরিনহো ইন্টার মিলানের কোচ থাকার সময় তাই দুজনের বিচ্ছেদ। মরিনহোকে ছেড়ে গেলেন ভিলাস-বোয়াস, কিন্তু হাঁটলেন মরিনহোর দেখানো পথেই। পেলেন মরিনহোর সাবেক ক্লাব পোর্তোর কোচের দায়িত্ব, তারপর চেলসির।দুজনের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কে প্রথম ফাটল ধরে ২০১১ সালে পোর্তোর হয়ে ভিলাস-বোয়াস ইউরোপা লিগ জেতার পর। আনুষ্ঠানিক প্রতিক্রিয়া জানাতে গিয়ে ভিলাস-বোয়াস বললেন, কোচিংয়ে তাঁর সব সময়ের প্রেরণা নাকি পেপ গার্দিওলা। তারপর ববি রবসন। মরিনহোর নামটাও এল, তবে অনেক পরে এবং প্রেরণা হিসেবে নয়। শুধু একসময় কাজ করার সুযোগ দিয়েছিলেন বলে কৃতজ্ঞতায়।গার্দিওলা তখন বার্সেলোনার কোচ। সে সময় রিয়াল মাদ্রিদের কোচ মরিনহোর মহাপ্রতিদ্বন্দ্বী। সাবেক সহকারীর মুখে এমন ‘অপমান’ হয়তো মেনে নিতে পারেননি মরিনহো। ভুলে যাওয়ার লোক যে তিনি নন, সেটা বোঝা গেছে কিছুদিন আগেই। সদ্য শেষ হওয়া দলবদলে টটেনহাম কিনতে চেয়েছিল ব্রাজিলিয়ান মিডফিল্ডার উইলিয়ানকে। হোয়াইট হার্ট লেনে গিয়ে ডাক্তারি পরীক্ষাও সেরে ফেলেছিলেন উইলিয়ান। কিন্তু টটেনহামের কাছ থেকে তাঁকে ছিনিয়ে স্টামফোর্ড ব্রিজে নিয়ে গেছেন মরিনহো। টটেনহাম বলল, এটা স্রেফ ডাকাতি।এসব কারণে মরিনহোর ওপর খুব খ্যাপা ভিলাস-বোয়াসও। পরশু টটেনহামের অনুশীলনের পর জানতে চাওয়া হয়েছিল সাবেক ‘বস’কে প্রতিপক্ষ হিসেবে পেয়ে তাঁর অনুভূতি। টটেনহাম কোচের কথা শুনেই বোঝা গেল সম্পর্কের টানাপোড়েনটা, ‘আমাদের দুজনের কথা হয় না অনেক দিন। প্রিমিয়ার লিগে কোচদের সভায় শেষ কথা হয়েছিল, তারপর আর নয়। আমার কাছে ওর কোনো ফোন নম্বরও নেই।’দুজনের এখনকার সম্পর্ক নিয়ে কথা বলতে রাজি হননি হোসে মরিনহো। তবে ব্যক্তিগত বিষয় সংবাদমাধ্যমে নিয়ে আসার জন্য স্বভাবসুলভ ভঙ্গিতে সাবেক সহকারীকে খোঁচা দিতে ভোলেননি তিনি, ‘এটা সম্পর্কের বিষয়, যা আমি সংবাদমাধ্যমে আলোচনা করি না। আমিও চ্যাম্পিয়নস লিগে লুই ফন গলের মুখোমুখি হয়েছি, যিনি আমার জীবনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ এবং আমাকে অনেক সাহায্য করেছেন। কিন্তু আমি সেখানে পেশাদার আচরণ করেছি। আমার মনে হয়, এটাই করা উচিত।’ভিলাস-বোয়াসকে তো অনেক কিছুই শিখিয়েছিলেন মরিনহো। ‘পেশাদারিত্ব’টা কি ছিল না সেই সিলেবাসে? ওয়েবসাইট।কক্সবাজারের উখিয়ায় বৌদ্ধ- মন্দিরে হামলার ঘটনায় দায়ের করা আরও পাঁচ মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হয়েছে। ২০ অক্টোবর উখিয়া থানার পুলিশ কক্সবাজার বিচারিক হাকিম আদালতে মামলাগুলোর অভিযোগপত্র দাখিল করে।মামলায় উখিয়া উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও জেলা জামায়াতের নেতা শাহজালাল চৌধুরী, তাঁর ছোট ভাই ও উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সরওয়ার জাহান চৌধুরীসহ ১৬১ জনকে অভিযুক্ত করা হয়। আদালতের পুলিশ পরিদর্শক মিজবাহ উদ্দিন এর সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, গত ১ সেপ্টেম্বর রামু, উখিয়া, কক্সবাজার সদর ও টেকনাফ উপজেলার বৌদ্ধ মন্দির ভাঙচুর ও হামলার পৃথক সাতটি মামলায় ২৬৪ জনের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। সহকারী পুলিশ সুপার (উখিয়া সার্কেল) মোহামঞ্চদ ফারুক প্রথম আলোকে বলেন, নানা ব্যস্ততায় অভিযোগপত্রের কথা বলা হয়নি। বৌদ্ধপল্লিতে হামলার ঘটনায় আরও সাত মামলার অভিযোগপত্র দেওয়া বাকি আছে। আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে রামুর তিনটি মামলার অভিযোগপত্র আদালতে দাখিল করা হবে।অভিযোগ প্রসঙ্গে উচ্চ আদালত থেকে জামিন পাওয়া দুই ভাই শাহজালাল চৌধুরী ও সরওয়ার জাহান চৌধুরী বলেন, আওয়ামী লীগের নেতারাই পরিকল্পিতভাবে বৌদ্ধ মন্দিরে হামলা চালিয়ে উল্টো বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। সময় এলে প্রকৃত হামলাকারীদের চিহ্নিত করা হবে।কক্সবাজার আদালতের পুলিশ ইন্সপেক্টর মিজবাহ উদ্দিন বলেন, গত ১ সেপ্টেম্বর উখিয়ার আরও দুটি মামলায় ৫৪ জন, রামুর একটিতে ৩৮ জন, সদর উপজেলার দুটিতে ৬০ জন এবং পরের দিন ২ সেপ্টেম্বর টেকনাফের দুটি মামলায় ১১২ জনকে আসামি করে আদালতে সাত মামলার অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছিল। গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর মধ্যরাতে উগ্র ধর্মান্ধ গোষ্ঠী রামুর ১২টি বৌদ্ধবিহারে অগ্নিসংযোগ করে। পরদিন ৩০ সেপ্টেম্বর উখিয়া ও টেকনাফের আরও সাতটি মন্দিরে অগ্নিসংযোগ করা হয়। এই ঘটনায় প্রায় ১৫ হাজার লোকের বিরুদ্ধে ১৯টি মামলা করা হয়।বর্ণাঢ্য আয়োজনের মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (চুয়েট) প্রথম আলোর ১৫তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদ্যাপিত হয়েছে।মঙ্গলবার সন্ধ্যায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পশ্চিম গ্যালারিতে কেক কেটে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন চুয়েটের উপাচার্য মো. জাহাঙ্গীর আলম। প্রথম আলো চুয়েট বন্ধুসভার উদ্যোগে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।চুয়েট বন্ধুসভার উপদেষ্টা সজল চৌধুরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য রফিকুল আলম, ছাত্রকল্যাণ পরিচালক আশুতোষ সাহা, পুরকৌশল বিভাগের শিক্ষক জি এম সাদিকুল ইসলাম ও আয়শা আক্তার এবং প্রথম আলোর চুয়েট প্রতিনিধি মিজানুর রহমান। এ ছাড়া মুঠোফোনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন বন্ধুসভার জাতীয় পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী সভাপতি সাইদুজ্জামান রওশন।প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে ছিল আলোচনা সভা, প্রথম আলো ও বন্ধুসভার পথচলা নিয়ে প্রামাণ্যচিত্র প্রদর্শনী।বঙ্গবন্ধু সেতু হয়ে ঢাকাগামী সব ধরনের ট্রেন চলাচল গতকাল শনিবার থেকে বন্ধ করে দিয়েছে পুলিশ।সকালে রাজশাহী ছেড়ে আসা পদ্মা এক্সপ্রেস ও নীলফামারী ছেড়ে আসা নীলসাগর এক্সপ্রেস টাঙ্গাইলে পৌঁছালে মাইকিং করে যাত্রীদের নামিয়ে দেয় পুলিশ। এ সময় ৯৭ জনকে আটক করা হয়।রেলস্টেশন মাস্টার জালাল উদ্দিন জানান, রাজশাহী থেকে ঢাকাগামী পদ্মা এক্সপ্রেস সকাল সাতটা ১০ মিনিটে এবং নীলফামারী থেকে ছেড়ে আসা ঢাকাগামী নীলসাগর এক্সপ্রেস সকাল সাতটা ৪০ মিনিটে স্টেশনে পৌঁছায়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে ট্রেন দুটি থেকে যাত্রীদের নামিয়ে দেওয়া হয় ও ট্রেন দুটি ফেরত পাঠানো হয়। ভোরে খুলনা থেকে ঢাকাগামী সুন্দরবন এক্সপ্রেস জয়দেবপুর পৌঁছার পর তা ফেরত পাঠানো হয়।টাঙ্গাইল স্টেশন থেকে আটক যাত্রীদের জেলা পুলিশ লাইনে খোলা আকাশের নিচে বসিয়ে রাখা হয়। বিকেলে সেখানে গিয়ে দেখা যায়, পুলিশ পাহারায় আটক যাত্রীদের বসিয়ে রাখা হয়েছে। তাঁদের অনেকেই শীতে কাতর হয়ে পড়েছেন। কর্তব্যরত পুলিশের একজন কর্মকর্তা জানান, আটক যাত্রীদের সকালে ও দুপুরে খাবার দেওয়া হয়েছে।আটক যাত্রীদের দেখতে পুলিশ লাইনের গেটে স্বজনদের ভিড় করতে দেখা যায়। আটক রাসেল ও শরীফ নামের দুই যাত্রীর বন্ধু শাকিল জানান, তাঁরা পদ্মা এক্সপ্রেসে করে চাটমোহর থেকে ঢাকা ফিরছিলেন। টাঙ্গাইল আসার পর তাঁর দুই বন্ধুকে পুলিশ ট্রেন থেকে আটক করে।পুলিশ সুপার সালেহ মোহামঞ্চদ তানভীর বলেন, আটক ব্যক্তিদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তবে কোনো অভিযোগ পাওয়া না গেলে তাদের ছেড়ে দেওয়া হবে।
ঢাকার আশুলিয়ার চারটি এলাকায় আনন্দমেলার নামে জুয়ার আসর বসিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। যাত্রা ও পুতুলনাচের নামে রাতভর চলে অশ্লীল নৃত্য। এক মাসের বেশি সময় ধরে এসব চললেও পুলিশ কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।আয়োজকেরা বলছেন, তাঁরা বিভিন্ন ধরনের তাস বা অভ্যন্তরীণ খেলার নামে হাইকোর্টের অনুমতি নিয়ে এসব করছেন। এ ছাড়া প্রতি রাতে পুলিশ ও জনপ্রতিনিধিদের মাসোহারা দিচ্ছেন।বঙ্গীয় প্রকাশ্য জুয়া আইন (১৮৬৭ সালে প্রণীত) অনুযায়ী যেকোনো ঘর, স্থান বা তাঁবু জুয়ার আসর হিসেবে ব্যবহূত হলে এর মালিক বা রক্ষণাবেক্ষণকারী, জুয়ার ব্যবস্থাপক বা এতে কোনো সাহায্যকারী তিন মাসের বা অনূর্ধ্ব ২০০ টাকা জরিমানা অথবা উভয় দণ্ডে দণ্ডিত হতে পারেন।২১ সেপ্টেম্বর আশুলিয়ার চারটি জুয়ার আসর ঘুরে দেখা গেছে, আয়োজকেরা তাস বা অভ্যন্তরীণ খেলার নামে যে ব্যবস্থা করেছিলেন তা ছিল মূলত জুয়া। যাত্রা ও পুতুল নাচের নামে চলেছে তরুণীদের দিগম্বর নৃত্য। এই চিত্র প্রতিদিনের—এমনটিই জানিয়েছেন জুয়া ব্যবস্থাপনার সঙ্গে যুক্ত ও স্থানীয় ব্যক্তিরা।আশুলিয়া থানার কাছে ঢাকা রপ্তানি প্রক্রিয়াকরণ এলাকার (ডিইপিজেড) পাশে দক্ষিণ শ্রীপুর তালপট্টি এলাকায় জুয়ার আসর বসিয়েছেন রমজান আলী নামের এক ব্যক্তি। তাঁকে সহায়তা করেছেন স্থানীয় ধামসোনা ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল লতিফ মণ্ডল। পাশের কথিত যাত্রামঞ্চে চলে তরুণীদের অশ্লীল নৃত্য।জুয়া কমিটির ব্যবস্থাপকের দায়িত্বে রয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতার ছোট ভাই নূরুল আমিন মণ্ডল। তিনি বলেন, ‘হাইকোর্টে রিট করে আমাদের জমির ওপর যাত্রা ও জুয়ার আসর বসানো হয়েছে। কিন্তু এর পরও ঘাটে ঘাটে বেশ টাকাপয়সা খরচ করতে হয়েছে। এ ছাড়া পুলিশকেও প্রতি রাতে টাকা দিতে হচ্ছে।’আশুলিয়া থানার পেছনে কাইসাবাড়ি এলাকার জুয়ার আসরের আয়োজক ধামসোনা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য ও আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত হালিম চৌধুরী।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক জুয়া কমিটির এক কর্মকর্তা বলেন, প্রতি রাতে আশুলিয়া থানাকে মোটা অঙ্কের টাকা দিয়ে জুয়ার আসর চালানো হচ্ছিল। শুক্রবার টাকা না দেওয়ায় শনিবার পুলিশ জুয়ার আসর বন্ধ করে দেয়।আশুলিয়ার নিশ্চিন্তপুরে পুড়ে যাওয়া তাজরীন ফ্যাশনসের পাশে আনন্দমেলার নামে জুয়া ও অশ্লীল নৃত্যের আসর বসিয়েছেন আওয়ামী লীগের নেতা হিসেবে পরিচিত ছানোয়ার হোসেন। সেখান থেকে দুই কিলোমিটার দূরে আশুলিয়ার ঘোষবাগেও আনন্দমেলার নামে জুয়া ও অশ্লীল নৃত্যের আসর বসিয়েছেন শচীন ও সেলিম হোসেন নামের আওয়ামী লীগের দুই কর্মী। ছানোয়ার হোসেন বলেন, সবাই আয়োজন করেছেন। তাই তিনিও করেছেন।স্থানীয় লোকজন জানান, প্রতিদিন সন্ধ্যার পর নাচ ও গানে জমজমাট হয়ে ওঠে ওই সব এলাকা। মাইকের শব্দে রাতে ঘুমানো কষ্ট হয়ে পড়েছে। ছেলেমেয়েদের লেখাপড়াও বিঘ্নিত হচ্ছে। পুলিশকে এ ব্যাপারে জানালেও লাভ হয় না।এ প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের স্থানীয় সাংসদ তালুকদার তৌহিদ জং মুরাদ বলেন, জুয়া ও অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে কার্যকর পদক্ষেপ নিতে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) বদরুল আলমকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ওসি এ ব্যাপারে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছেন না।ওসি বদরুল বলেন, হাইকোর্টে রিটের কারণে জুয়া বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নেওয়া যাচ্ছে না। তবে অশ্লীল নৃত্য বন্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। জুয়ার আসর থেকে মাসোহারা নেওয়ার অভিযোগ সম্পর্কে ওসি বলেন, অভিযোগ অনেকেই করতে পারেন, সত্য কি না, সেটা বড় বিষয়।চট্টগ্রাম নগরে গতকাল সোমবার রাতে মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য হুমায়ুন কবীর মুরাদকে কুপিয়ে হত্যা করেছে দুর্বৃত্তরা।মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. শহিদুল্লাহ জানান, রাত পৌনে ১২টার দিকে মুরাদ মোটরসাইকেলে চড়ে যাচ্ছিলেন। পথে নগরের পাহাড়তলির রেলক্রসিং এলাকায় তাঁকে থামিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে ফেলে রায় দুর্বৃত্তরা। খবর পেয়ে পুলিশ দ্রুত তাঁকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন।মুরাদ নগরের টাইগারপাস এলাকার শাহনেওয়াজের ছেলে।শহিদুল্লাহ আরও জানান, হরতাল-সমর্থকেরা মুরাদকে হত্যা করেছে বলে স্থানীয় লোকজন জানিয়েছেন। তবে পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে।ফেনীর ফুলগাজীতে একটি শিশুকে (৭) ধর্ষণের অভিযোগে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার রাতে শিশুটির মা নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ফুলগাজী থানায় এ মামলা করেন।পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, উপজেলার সদর ইউনিয়নের একটি গ্রামের একটি শিশু গত রোববার বিকেলে ছাগল আনতে বাড়ির পাশের মাঠে যায়। সেখানে পাশের মনতলা গ্রামের আকবর হোসেন শিশুটিকে একা পেয়ে ধর্ষণ করে। শিশুটি বাড়ি গিয়ে তার মাকে বিষয়টি জানায়। ওই দিন সন্ধ্যায় শিশুটিকে ফেনী সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। বিষয়টি ফুলগাজী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবুল হোসেনকে জানানো হয়। তবে এ ধরনের ধর্ষণের ঘটনার বিচার ইউপি কার্যালয়ে সম্ভব নয় বলে শিশুটির পরিবারকে জানিয়ে দেন চেয়ারম্যান।পুলিশ জানায়, গত মঙ্গলবার রাতে শিশুটির মা আকবর হোসেনকে আসামি করে ফুলগাজী থানায় মামলা করেন।ফেনী সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) অসীম কুমার সাহা জানান, চিকিৎসা শেষে গতকাল বুধবার ধর্ষণের শিকার শিশুটিকে হাসপাতাল থেকে ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে।জয়ের সম্ভাবনা জাগিয়েও শেষ পর্যন্ত হার। জয় দিয়ে সিরিজ শেষ করতে না পারার হতাশা আছেই। তবে মিসবাহ-উল-হক সিরিজ জয়টাকেই দেখছেন বড় করে। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রথমবারের মতো ওয়ানডে সিরিজ জেতার (২-১) পর শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে ৩-২-এ জয়। পরশু ম্যাচ শেষে পাকিস্তান অধিনায়ক এই দুটি সিরিজ জয়কে ‘বিশেষ অর্জন’ বললেন, ‘এটা ছিল আমাদের জন্য কঠিন একটা বছর। তবে আমরা দক্ষিণ আফ্রিকা ও শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে সিরিজ জিতেছি। এটা বিশেষ কিছু।’ মিসবাহর দাবি, শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে সিরিজ জয়টা দলকে মানসিকভাবে চাঙা করেছে, ‘শুক্রবারের ম্যাচটাও আমাদের হাতের মুঠোয় ছিল। দুর্বল ফিল্ডিংয়েই তা হাতছাড়া হয়ে গেছে।’শেষ তিন ওভারে শ্রীলঙ্কার দরকার ছিল ২৭ রান। ওই সময় সাঈদ আজমলের বলে মাকসুদ অজন্তা মেন্ডিসের ক্যাচ না ফেললে ফল অন্য রকম হতেই পারত। শ্রীলঙ্কাকে ২ উইকেটে জেতাতে মেন্ডিস করেছেন ১৪ বলে ১৯ রান। অপরাজিত ৬৪ রান করে ম্যাচসেরা দিনেশ চান্ডিমাল। এএফপি।
গত বছর বয়সভিত্তিক সাঁতারে ১১টি ইভেন্টে অংশ নিয়ে ১০টি সোনা ও ১টি রুপা। ৭টি নতুন রেকর্ড। মিরপুর সুইমিং কমপ্লেক্সে এবারের বয়সভিত্তিক সাঁতারের প্রথম দিনেও ৫টি সোনা জিতেছে আরিফুল ইসলাম। এবারও নিজেকে ছাড়িয়ে যাওয়ার প্রত্যয় কিশোরগঞ্জের কিশোরের গত বছর তো দুর্দান্ত পারফরম্যান্স করেছিলে। দিন শেষে এবারও নিশ্চয় খুশি?আরিফুল: এবার গেমস শুরুর আগে ভেবেছিলাম ১৩টা ইভেন্টে অংশ নিয়ে ১০-১২টা রেকর্ড করব। কিন্তু সেটা হলো না। এ বছর জেএসসি পরীক্ষা দেব। পরীক্ষার কারণে ভালোভাবে অনুশীলন করতে পারিনি। বিকেএসপিতে আমাদের মোট ১৪ সেশন প্র্যাকটিস করতে হয়। আমি মাত্র সাত সেশন করেছি। এভাবে ভালো রেজাল্ট করা সম্ভব নয়। তবে এখনো আমার আত্মবিশ্বাস আছে অন্তত ৫-৬টা রেকর্ড হবে। এতগুলো ইভেন্টে অংশ নাও। ক্লান্তি লাগে না?আরিফুল: আসলে আমার অভ্যাস হয়ে গেছে। তা ছাড়া আমি চ্যালেঞ্জ নিতে পছন্দ করি। আর নিজেকে সব সময় ফিট রাখার চেষ্টা করি, যাতে অনেকগুলো ইভেন্টে সাঁতরাতে পারি। কিশোরগঞ্জ থেকে উঠে এসেছেন কারার মিজান, কারার ছামেদুলরা। এরপর তোমরা দুই ভাই সাঁতারে এসেছ। ওনাদের সঙ্গে কি পরিচয় আছে?আরিফুল: ছামেদুল আঙ্কেল আমার মামার বন্ধু। ওনার সঙ্গে অনেকবার কথা হয়েছে। মিজান আঙ্কেল এখন দেশের বাইরে থাকেন। এটা সত্যি, ওনাদের পর কিশোরগঞ্জ থেকে সেভাবে সাঁতারু আসছে না। আসলে বেশি বেশি প্রতিযোগিতা না হলে তো সাঁতারু উঠে আসবে না। আমরা এই বয়সভিত্তিক সাঁতার প্রতিযোগিতার জন্য সারা বছর অপেক্ষায় থাকি। তুমি সাঁতারে এলে কীভাবে?আরিফুল: আম্মার মুখে গল্প শুনেছি, আমার বয়স যখন তিন থেকে চার মাস, তখন গোসল করাতে গেলে নাকি মোটেও কাঁদতাম না। উল্টো পানি থেকে উঠতেই চাইতাম না। আম্মু বলতেন, ‘তুই সাঁতারেই ভালো করবি।’ আর ভাইয়া (শরিফুল ইসলাম) যখন সুযোগ পেল বিকেএসপিতে, তখন থেকে আমিও চেষ্টা করতাম ওখানে ভর্তি হতে। আসলে অন্য খেলার চেয়ে সাঁতারই আমার বেশি ভালো লাগে। এই ভালো লাগার পেছনে একটা মজার গল্পও আছে। কী সেটা?আরিফুল: ছোটবেলায় যখন সাঁতার শিখেছিলাম, তখন আমাদের বাড়ির পাশের পুকুরে একটা প্রতিযোগিতা হয়েছিল। সেখানে আমি প্রথম হয়ে একটা ফাউন্টেন কলম পুরস্কার পেয়েছিলাম। আমার এক বন্ধু সেটা দিয়েছিল। পুরস্কার পেয়েছিলাম বলেই কি না, এর পর থেকে অন্য খেলার চেয়ে সাঁতার কাটতে বেশি ভালো লাগত। তোমার সেই কলমটা আছে?আরিফুল: না। আমার সেই কলমটা হারিয়ে গেছে। জীবনের প্রথম পুরস্কার হারিয়ে গেছে বলে খুব খারাপ লাগে। লিখতে গেলে কিংবা এখনো কোনো পদক জিতলে সেই কলমটার কথা মনে পড়ে। তোমার ভাই শরিফুল ইসলামও তো সাঁতারু। তাঁকে ছাড়িয়ে যেতে চাও?আরিফুল: শুধু ভাইকে নয়, দেশের সেরা সাঁতারু হতে চাই। কোনো নির্দিষ্ট সাঁতারুকে কি ভালো লাগে?আরিফুল: অলিম্পিকে সোনাজয়ী জাপানি সাঁতারু কোসুক কিতাজিমার সাঁতার খুব ভালো লাগে। মাঝেমধ্যে কিতাজিমা আর ফেল্পেসর আইএমের (ব্যক্তিগত মিডলে) ভিডিও দেখি। আমাদের বিকেএসপির কোচ মোশাররফ স্যারের ল্যাপটপে এই ভিডিওগুলো আছে।স্বপন শীলের ছোট ছেলে সজীব শীল (৯) বাবা বাবা করে কেঁদে ফিরছে। স্বজনদের কোনো সান্ত্বনাই ওর কান্না থামাতে পারছে না। স্বপনের বড় ছেলে সাগর শীল (১৫) শোকে যেন পাথর হয়ে গেছে। কিছুক্ষণ পর পর ছোট ভাই সজীবের মাথায় হাত বুলিয়ে সান্ত্বনা দেওয়ার চেষ্টা করলেও সাগর যেন কোনো ভাষা খুঁজে পাচ্ছে না।পিরোজপুরের জিয়ানগর উপজেলার বালিপাড়া ইউনিয়নের চর বলেশ্বর গ্রামে গত রোববার জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের হামলায় নিহত হন যুবলীগের কর্মী স্বপন শীল (৩৫)। ওই দিন রাতেই মঠবাড়িয়া সদর ইউনিয়নের আন্ধারমানিক গ্রামের বাড়িতে স্বপনের শেষকৃত্য সম্পন্ন হয়।সরেজমিনে গতকাল সোমবার সকালে দেখা গেছে, গ্রামের বাড়ি আন্ধারমানিকে স্বজনদের আহাজারি চলছে। স্বপনের মা কল্পনা রানী ও স্ত্রী বিউটি রানীর কান্না থামছে না।ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী সাগর শীল বলে, ‘রোববার ভোর চারটার দিকে কয়েক শ মানুষ ধারালো অস্ত্র নিয়ে আমাদের বাড়িতে হামলা করে। বাবা (স্বপন) ঘর থেকে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করলে ওরা তাঁকে ধরে নিয়ে যায়। তারপর তাঁর দুই পায়ের রগ কেটে ও কুপিয়ে জখম করে বাড়ির উঠানে ফেলে রাখে। এ সময় দুর্বৃত্তরা আমাদের ঘরে লুটপাট চালায়। ঘরের আসবাবপত্র তছনছ করে। তারা আমার মায়ের কানের ও নাকের সোনার গয়না খুলে নিয়ে যায়।’সাগর শীল জানায়, তার বাবাকে গুরুতর আহত অবস্থায় সকালে বাগেরহাটের মোরেলগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটায় সেখান থেকে খুলনা শেখ আবু নাসের বিশেষায়িত মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়ার পথে বেলা ১১টার দিকে তিনি মারা যান।স্বপনের বাবা সুনীল চন্দ্র শীল জানান, ১৮ বছর আগে স্বপন জিয়ানগর উপজেলার চর বলেশ্বর গ্রামের বিমল চন্দ্র শীলের মেয়ে বিউটি রানীকে (৩২) বিয়ে করে শ্বশুরবাড়িতে বসবাস করতে শুরু করেন। স্বপনের বড় ছেলে সাগর শীল দশম শ্রেণী ও ছোট ছেলে সজীব শীল চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র। বর্তমানে সাগরের এসএসসির নির্বাচনী পরীক্ষা চলছে। স্বপন দীর্ঘদিন বালিপাড়ার ইউনিয়নের চর বলেশ্বরে সেলুনের দোকান পরিচালনা করতেন।চট্টগ্রাম জেলা নির্বাচন কার্যালয়কে লক্ষ্য করে গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় পেট্রলবোমা ছুড়ে নাশকতার চেষ্টা চালানো হয়েছে। তবে এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।পুলিশ সূত্র জানায়, সন্ধ্যা সোয়া ছয়টার দিকে জামালখানের কার্যালয়ের নিচতলার বাইরের আঙিনায় একটি পেট্রলবোমা ছুড়ে মারা হয়। এ সময় বোমাটির বিস্ফোরণ ঘটে। এতে বাইরে থাকা কিছু বাতিল কাগজপত্রে আগুন ধরে যায়। জানা গেছে, সোয়া ছয়টার দিকে থানা নির্বাচন কর্মকর্তারা দোতলায় জেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে বসে নির্বাচনের বিষয় নিয়ে আলাপ করছিলেন।এ সময় নিচে পুলিশ পাহারা ছিল। তখন হঠাৎ করে একটি পেট্রলবোমা বাইরে থেকে নিচতলার আঙিনায় ছুড়ে মারা হয়। সেটি বিকট শব্দে বিস্ফোরিত হলে সঙ্গে সঙ্গে কর্তব্যরত পুলিশ কয়েকটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে।থানা নির্বাচন কর্মকর্তা (কোতোয়ালি) শফিকুর রহমান জানান, ‘হঠাৎ বিকট শব্দে বিস্ফোরণ ঘটে। পরে পুলিশ ও আমাদের লোকজন দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলে। এতে কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।’বাংলাদেশের উত্তরের উপজেলা লালমনিরহাটের পাটগ্রাম। মুক্তিযুদ্ধের সময় এটি ছিল মুক্তাঞ্চল। এখান থেকেই পরিচালিত হতো ৬ নম্বর সেক্টরের কার্যক্রম। তাই এখানকার মানুষ কোনো সহিংসতা দেখেনি। স্বাধীনতার পর ৪২ বছরেও এই এলাকায় রাজনৈতিক কোনো সহিংসতা হয়নি। কিন্তু কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর জামায়াত-শিবিরের ডাকা হরতাল চলাকালে ১৫ ডিসেম্বর এখানকার আওয়ামী লীগ ও জাতীয় পার্টির নেতা-কর্মী-সমর্থকদের অর্ধশত ঘরবাড়ি জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। কুপিয়ে হত্যা করা হয় আওয়ামী লীগের একজন নেতাকে। হরতাল চলার সময় পুলিশের সঙ্গে সহিংসতায় মারা যান শিবিরের তিন কর্মী। চার দিন পর বাউরায় আওয়ামী লীগের জনসভাস্থলে হামলা করেন জামায়াত-বিএনপির কর্মীরা। পুড়িয়ে দেওয়া হয় অর্ধশত মোটরসাইকেল।হিমালয়ের কোলঘেঁষা পাটগ্রামে এখন তীব্র শীত। বিভিন্ন সড়কে টহল দিচ্ছে সেনাবাহিনী। পাটগ্রাম-বুড়িমারী-লালমনিরহাট, পাটগ্রাম-আউলিয়ারহাট-বুড়িমারী, পাটগ্রাম-দহগ্রাম, পাটগ্রাম-সরকারের হাটসহ বিভিন্ন সড়কের দুই পাশে শত শত কাটা গাছের গুঁড়ি।তীব্র শীতের মধ্যেই গতকাল শনিবার দুপুরে হাজির হলাম হামলার শিকার ইব্রাহিম মিয়ার বাড়িতে। চারপাশে ভস্মীভূত খাট, বাড়ির গাছগুলোও পোড়া।ইব্রাহিম জানালেন, একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছেন তিনি। আওয়ামী লীগের সমর্থক হিসেবে এলাকায় পরিচিত। তাঁর ও তাঁর পাঁচ ছেলের সাতটি ঘর, ৩৫০ মণ ধান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তিন ছেলের ঘরের ভিটেমাটিটুকুই কেবল আছে।ছোট ছেলে জমিনুর ভ্যানচালক। আহাজারি করে তিনি বলেন, ‘বাড়িতে আগুন দিয়ে হামলাকারীরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছিল। আমরা নেভাতে গেলে মারধর করেছে। ওরা আমার ভ্যানটাও পুড়িয়ে দিয়েছে।’আরেক ভাই জাহেদুলের স্ত্রী আসমা খাতুন বলেন, ‘এই শীতের মধ্যে একটা ঘরে আমরা খড় বিছিয়ে থাকি। বাকিরা পাশে এক আত্মীয়র বাড়িতে গিয়ে থাকে।’ইব্রাহিম মিয়ার স্ত্রী বৃদ্ধা জরিতুন নেছা বলেন, ‘বাবা, হামরা কী করছি বাহে? কেনে ওমরা হামার বাড়িঘরলা পুড়ি ছাই করি দিল। মোর জীবনেও মাইনষির বাড়িঘরত এমন করি আগুন নাগাইয়া জ্বালাইবার দেখুনাই।’ইব্রাহিম মিয়ার বাড়ির পাশেই তোফাজ্জল হোসেনের বাড়ি। সেটিও পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। গতকাল দেখা গেল, বাঁশ দিয়ে নতুন ঘর তোলা হচ্ছে। পাশেই ৯ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাদের এলাহীর পাকা বাড়ি। ভবনের চারপাশে পোড়া দাগ। এই বাড়ির ছাদের টিন লাগানোর কাজ চলছিল গতকাল। কাদেরের আরেক ভাই জাতীয় পার্টির উপজেলা আহ্বায়ক কুদরত-ই এলাহীর বাড়ির ফ্রিজ, টিভি, আলমারি এবং বাড়ির সামনে রাখা একটি মাইক্রোবাস পুড়ে ছাই হয়ে আছে।কুদরত-ই এলাহী বলেন, ‘আমরা দুই ভাই শিক্ষকতা করি। আরেক ভাই একটা কলেজের অধ্যক্ষ। জামায়াত-শিবিরের কয়েক শ লোক এসে আমাদের চার ভাইয়ের বাড়ি পুড়িয়ে দেয়। আমি প্রাণভয়ে আরেক বাড়িতে আশ্রয় নিই। চোখের সামনে নিজের বাড়িঘর জ্বলতে দেখতে হলো।’কুদরত বলেন, ‘১৯৭১ সালে আমি ষষ্ঠ শ্রেণীতে পড়তাম। তখন থেকে শুরু করে গত ৪২ বছরে পাটগ্রামবাসী এমন সহিংসতা দেখেনি।’এলাকার লোকজন জানান, ১৮-দলীয় জোটের ডাকা প্রথম ৬০ ঘণ্টা হরতালের প্রথম দিন গত ২৬ অক্টোবর প্রথম তাণ্ডব শুরু করে জামায়াত-শিবির। সে দিন বাউরা ইউনিয়নের সফিরহাট বাজারের ১৬টি ও বাউরা বাজারে হিন্দুদের তিনটি দোকান ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া হয় বুড়িমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে। একই দিন শ্রীরামপুর ইউনিয়নের আওলিয়ারহাট, কাউয়ামারী ও দহগ্রাম ইউনিয়নেও চলে ভাঙচুর। ৪ নভেম্বর হরতাল চলাকালে পাটগ্রাম পৌরসভার ধরলা সেতু এলাকার সোহাগপুরে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে নাসির উদ্দিন (২২) নামের ছাত্রদলের স্থানীয় এক নেতা গুলিবিদ্ধ হয়ে মারা যান। স্থানীয় লোকজন জানান, কাদের মোল্লার ফাঁসির রায় কার্যকর হওয়ার পর সহিংস হয়ে ওঠে জামায়াত-শিবির। রায় কার্যকরের রাতেই বুড়িমারী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মুসা আলীর বাড়িতে আগুন দেওয়া হয়। ১৪ ডিসেম্বর শিমুলতলী এলাকায় পুড়িয়ে দেওয়া হয় ট্রাক। ১৫ ডিসেম্বর ভোরে জামায়াতের হরতাল চলাকালে পাটগ্রামের সরেয়ার বাজার এলাকায় জামায়াত-শিবির শতাধিক গাছ কেটে পাটগ্রাম উপজেলার বিভিন্ন সড়ক আটকে দেয়। সরেয়ার বাজার এলাকায় অবরোধ সরাতে গেলে পুলিশের ওপর হামলা চালায় জামায়াত-শিবির। ওই সংঘর্ষেই শিবিরের কর্মী মনিরুল, আবদুর রহিম ও সাজু মিয়া মারা যান। এর জের ধরে সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সরেয়ার বাজার এলাকায় পাটগ্রাম পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ড আনসার-ভিডিপির কমান্ডার আমিনুর রহমানের বাড়ি, চালকল ও চাতাল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। আগুন দেওয়া হয় ওই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি কাদের এলাহী ও তাঁর চার ভাইয়ের বাড়িতে। আগুন নেভাতে গেলে ৬ নম্বর ওয়ার্ড অওয়ামী লীগের ধর্মবিষয়ক সম্পাদক মিন্টু মিয়াকে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর জের ধরে বুড়িমারী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি আছির উদ্দিন ও জামায়াতের নেতা এরশাদ হোসেনের বাড়িতে আগুন দেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। এর পরই বেলা দুইটা থেকে এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। চতুর্থ দফা অবরোধের শেষ দিন ১৯ ডিসেম্বর বাউরা পাবলিক উচ্চবিদ্যালয়ে মাঠে সাবেক প্রতিমন্ত্রী মোতাহার হোসেনের নির্বাচনী সভায় যোগ দেওয়া নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা চালায় জামায়াত-শিবির। সেখানে ৪২টি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এসব ঘটনায় ২২টি মামলায় অজ্ঞাত আট হাজার জনের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে পরিস্থিতি শান্ত থাকলেও গ্রেপ্তার আতঙ্কে অনেকেই এলাকায় থাকছেন না। তবে পাটগ্রামের কাফিরবাজার, ঘোষপাড়া, ডাঙ্গিপাড়, বগুড়াপাড়া ও দয়ালেরটারি এলাকার লোকজন জানান, এ কয়টি এলাকায় জামায়াত-শিবির ঐক্যবদ্ধ হয়ে পাহারা দিচ্ছে। এতে আওয়ামী লীগ ও হিন্দুসম্প্রদায়ের লোকদের মধ্যে চরম আতঙ্ক বিরাজ করছে।পাটগ্রাম উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক রুহুল আমিন প্রথম আলোকে বলেন, পাটগ্রাম বরাবরই শান্তিপ্রিয় এলাকা হিসেবে পরিচিত। কখনোই এখানে সহিংসতা হয়নি। কিন্তু এবার জামায়াত-শিবির সারা দেশের সুনির্দিষ্ট কতগুলো জায়গার পাশাপাশি পাটগ্রামেও সহিংসতা শুরু করেছে। এখানকার শান্তিপ্রিয় মানুষ এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ চায়।জানতে চাইলে পৌর জামায়াতের সেক্রেটারি সোহেল রানা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পুলিশ আমাদের মিছিলে বিনা কারণে গুলি চালালে তিনজন কর্মী মারা যান। এরপর নেতা-কর্মীরা ক্ষুব্ধ হয়ে মিছিল করেন। সেখান দিয়ে উচ্ছৃঙ্খল কেউ কেউ হয়তো কারও বাড়িঘরে হামলা চালাতে পারে। কিন্তু সেটা আমাদের অজান্তে হয়েছে।’পাটগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, ‘এখন পরিস্থিতি স্বাভাবিক আছে। সহিংস ঘটনায় জড়িত সন্দেহে এখন পর্যন্ত ২২ জনকে আমরা গ্রেপ্তার করেছি। সামনে যাতে পরিস্থিতি আর খারাপ না হয়, সে ব্যাপারেও আমরা সতর্ক আছি।’
মানিকগঞ্জের ঘিওর উপজেলায় খাসজমিতে অবৈধভাবে ঘর তোলায় একটি সড়কের নির্মাণকাজ বন্ধ হয়ে গেছে। এ নিয়ে এলাকাবাসীর মধ্যে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) ঘিওর উপজেলা প্রকৌশলী মো. ইউসুফ হোসেন বলেন, অবৈধ দোকান উচ্ছেদ করতে স্থানীয় প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার অনুরোধ করা হয়েছে।এলজিইডির কর্মকর্তা ও এলাকাবাসী জানান, এলাকাবাসীর যাতায়াতের সুবিধার্থে ঘিওরের পয়লা ইউনিয়নের তেরশ্রী বাজার থেকে বড় কুষ্টিয়া পর্যন্ত দুই হাজার ৩৭০ ফুট দীর্ঘ ও ১০ ফুট প্রশস্ত পাকা সড়ক নির্মাণ করছে এলজিইডি। প্রায় দেড় কোটি টাকা ব্যয়ে ওই সড়কের নির্মাণকাজ গত জুন মাসে শুরু হয়। কিন্তু তেরশ্রী বাজারের কাছে নির্মাণাধীন সড়কের জমি দখল করে তিনটি দোকান ঘর তোলায় ওই অংশে রাস্তা নির্মাণ করা সম্ভব হচ্ছে না।গত বৃহস্পতিবার সরেজমিনে দেখা গেছে, পূর্ব কুষ্টিয়া থেকে তেরশ্রী গ্রামের মজিবর রহমানের বাড়ির পাশ পর্যন্ত ইটের খোয়া ও বালু ফেলা হয়েছে। সেখান থেকে তেরশ্রীবাজার পর্যন্ত প্রায় ৩০০ গজ সড়কে কোনো কাজ করা হয়নি। দখলদারেরা সেখানে দোকানঘর তুলে ভাড়া দিয়েছেন। আওয়ামী লীগের স্থানীয় পয়লা ইউনিয়ন শাখার সহসভাপতি মজিবর রহমান ও তেরশ্রী গ্রামের রফিক মৃধা জানান, বেশ কয়েক বছর ধরে আমজাদ হোসেন, দুলাল হোসেন ও আবদুল মোন্নাফ মিয়া নামের তিন ব্যক্তি দোকানঘর তুলে ভাড়া দিয়েছেন। সম্প্রতি উপজেলা ভূমি অফিস থেকে কর্মকর্তারা এসে সড়ক নির্মাণের জন্য জমি মেপে গেছেন। ওই দোকানগুলো সড়কের জায়গায় পড়লেও তা উচ্ছেদ করা হচ্ছে না। এ ব্যাপারে ব্যবস্থা নিতে তাঁরা জেলা প্রশাসকের কাছে লিখিত আবেদন করেছেন। যোগাযোগ করা হলে আবদুল মোন্নাফ দাবি করেন, তাঁর নিজের জায়গাতেই দোকান তুলেছেন। আমজাদ হোসেন বলেন, ‘খাসজমিতে হলে দোকান অন্যত্র সরিয়ে নেব।’ঘিওর উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) শরীফুল ইসলাম বলেন, সরকারি খাসজমিতে নির্মিত দোকান উচ্ছেদ করতে দখলদারদের তিন দফায় নোটিশ দেওয়া হয়েছে। শিগগিরই অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মুন্সিগঞ্জের ইদ্রাকপুর দুর্গের সংস্কার ও সংরক্ষণবিষয়ক পরামর্শক কমিটির সিদ্ধান্তকে উপেক্ষা করে এর পাশেই রাজা শ্রীনাথ অফিসার্স ক্লাব নির্মাণ করা হচ্ছে। জেলা পরিষদের অর্থায়নে গত রোববার এর নির্মাণকাজের উদ্বোধন করেন জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান।শ্রীনাথ ক্লাবটি দুর্গের ঠিক পূর্ব পাশে। মুন্সিগঞ্জের সরকারি-বেসরকারি কর্মকর্তারা সেখানে ঘরোয়া খেলাধুলা ও টেনিস খেলতেন। তবে প্রাচীন ক্লাবের মূল ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় জেলা প্রশাসন তা ভেঙে ফেলে।গত ৯ সেপ্টেম্বর প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের মহাপরিচালক শিরিন আখতারসহ পরামর্শক কমিটির সদস্যরা দুর্গটি পরিদর্শন করে ভেঙে ফেলা শ্রীনাথ ক্লাবের স্থানে নতুন ভবন নির্মাণ করতে নিষেধ করেন। ওই দিন পরামর্শক কমিটি জেলা প্রশাসকের সঙ্গে তাঁর কার্যালয়ে সভা করে এ সিদ্ধান্ত নেয়। একই সঙ্গে দুর্গের আশপাশের ডাকবাংলোসহ আরও বেশ কয়েকটি ভবন ভেঙে ফেলার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। দুর্গটি যাতে দূর থেকে সহজে দেখা যায়, সে জন্য পরামর্শক কমিটি ওই সিদ্ধান্ত নেয়। জেলা প্রশাসক সাইফুল হাসানও ওই কমিটির সদস্য।জেলা পরিষদের কর্মকর্তারা জানান, দুর্গের পাশে রাজা শ্রীনাথ অফিসার্স ক্লাবের নতুন ভবন তৃতীয় তলা পর্যন্ত নির্মাণ করা হবে। এ জন্য এক কোটি দুই লাখ ৮৫ হাজার টাকা ব্যয় হওয়ার কথা। তবে ভবন নির্মাণে জেলা পরিষদ প্রথম ধাপে সাড়ে আট লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়েছে। ভবন নির্মাণে ঠিকাদার নিয়োগসহ কার্যাদেশ দেওয়া হয়েছে।কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, অফিসার্স ক্লাবটি বর্তমান টেনিস মাঠের দক্ষিণ দিকে সদর উপজেলা ভূমি কার্যালয়সংলগ্ন স্থানে করা যেতে পারে। আর মাঠটি উত্তর দিকে ভেঙে ফেলা ক্লাবের জায়গায় বর্ধিত করা হলে দুই দিকই রক্ষা করা সম্ভব হবে।পরামর্শক কমিটির সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে দুর্গের পাশে ভবন নির্মাণের ব্যাপারে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসক মো. সাইফুল হাসান বলেন, ‘আমরা ওইখানে একতলা ভবন নির্মাণ করব। প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। একতলা ভবন নির্মাণে কোনো বাধা নেই।’তবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের ঢাকা অঞ্চলের পরিচালক মো. আতাউর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রত্নতত্ত্ব নিদর্শন বা প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধিগ্রহণ করা কোনো স্থাপনার আশপাশে কোনো বাড়ি বা কোনো স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে অধিদপ্তরের অনুমতি নিতে হয়। শ্রীনাথ অফিসার্স ক্লাব নির্মাণে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের কোনো অনুমতি নেওয়া হয়নি।’বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের অবরোধ চলাকালে দেশের ১৩টি স্থানে নাশকতা ও বড় ধরনের হামলায় বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে রেল যোগাযোগ। গত সোমবার রাত থেকে গতকাল বুধবার পর্যন্ত রেলে ৬০টি ছোট-বড় নাশকতা ও হামলা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে বগি পোড়ানো, লাইন-ফিশপ্লেট খুলে ফেলা ও রেললাইনে অগ্নিসংযোগ।গত দুই দিনে অন্তত ২০টি জেলার রেল যোগাযোগ পাঁচ থেকে ২৬ ঘণ্টা পর্যন্ত বন্ধ ছিল। ঢাকা থেকে ২১টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করতে হয়েছে। বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে ট্রেনের সময়সূচি। চরম দুর্ভোগে পড়েন যাত্রীরা। নাশকতা-হামলায় ক্ষয়ক্ষতির পাশাপাশি বাংলাদেশ রেলওয়ের আয়ও কমে গেছে। বর্তমানে দেশের ৪৪টি জেলার সঙ্গে রেলসংযোগ রয়েছে।রেলওয়ের কর্মকর্তারা জানান, নাশকতা ও হামলার কারণে মঙ্গলবার থেকে ১৫টি কমিউটার ও ডেমু ট্রেনের চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যে প্রতিদিন প্রায় ১০০ ট্রেন ছেড়ে যায়। এখন যেসব ট্রেন চলাচল করছে, সেগুলো এক থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে ছাড়ছে। নাশকতার কারণে পথে আটকে থেকে যাত্রীরা অবর্ণনীয় দুর্ভোগ পোহান।রেলওয়ে সূত্র জানায়, আর্থিক ক্ষয়ক্ষতি চূড়ান্ত করা না হলেও তা সাত থেকে আট কোটি টাকা হবে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুই দিনে কোটি টাকার বেশি আয় কমে গেছে। তবে সবচেয়ে বড় সমস্যাটি হচ্ছে, নাশকতার কারণে কয়েকটি জেলার সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপন করা কঠিন হয়ে পড়েছে। গত দুই দশকে রেলকে কখনো একসঙ্গে এতগুলো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্বিপাকে পড়তে হয়নি।বাংলাদেশ রেলওয়ের মহাপরিচালক আবু তাহের গতকাল রাতে প্রথম আলোকে বলেন, রেলকে এর আগে এভাবে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি। ট্রেন চলাচল স্বাভাবিক করতে সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারকে রেলের পক্ষ থেকে চিঠি দেওয়া হয়েছে। আনসার ও ভিডিপির মহাপরিচালকের সঙ্গেও বৈঠক করা হয়েছে।রেলমন্ত্রী মুজিবুল হক গতকাল রেলভবনে সাংবাদিকদের বলেন, গত ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত হরতাল-অবরোধে রেলের প্রায় ৩০ কোটি টাকা মূল্যের সম্পদ নষ্ট হয়েছে।কয়েকটি জেলা এখনো রেল যোগাযোগবিচ্ছিন্ন: সোমবার রাত থেকে গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ঢাকা থেকে দেশের অন্তত আটটি গুরুত্বপূর্ণ গন্তব্যে ৫ থেকে ২৬ ঘণ্টা পর্যন্ত ট্রেন যেতে পারেনি। এসব ট্রেনে চলাচলকারী আরও অন্তত ১২টি জেলার যাত্রীদেরও যাতায়াত বন্ধ থাকে। ঢাকার বাইরের বড় শহরগুলো থেকে অন্য শহরে চলাচলকারী অনেক ট্রেনও বন্ধ ছিল।গাজীপুর সদর উপজেলার রাজেন্দ্রপুরে নাশকতার কারণে মঙ্গলবার রাত সোয়া ১০টার দিকে আন্তনগর অগ্নিবীণা এক্সপ্রেসের ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয়। এরপর ঢাকার সঙ্গে ময়মনসিংহ, জামালপুর ও নেত্রকোনার রেল যোগাযোগ বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত ওই পথ চালু করা যায়নি। এ পথে প্রতিদিন পাঁচ জোড়া করে আন্তনগর ও মেইল ট্রেন চলাচল করে। রেলের কর্মকর্তারা জানান, এ পথের সব ট্রেনেরই যাত্রী চাহিদা ব্যাপক। এর আগে ময়মনসিংহের গৌরীপুরে লাইনে নাশকতার কারণে আন্তনগর ট্রেন হাওর এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন ও ছয়টি বগি লাইনচ্যুত হয় এবং ঢাকা-নেত্রকোনা পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। গতকাল বেলা সোয়া দুইটায় লাইনটি চালু হলেও হাওর এক্সপ্রেসের বগি নষ্ট হওয়ার কারণে ট্রেনটি চলেনি।অবরোধ কর্মসূচি ঘোষণার পর সোমবার রাত পৌনে ১১টার দিকে ঢাকা-চট্টগ্রাম পথের ইমামবাড়ী এলাকায় তিনটি স্থানে প্রায় দুই কিলোমিটার রেললাইন উপড়ে ফেলেন অবরোধ-সমর্থকেরা। এ কারণে দেশের গুরুত্বপূর্ণ এ পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল প্রায় ২৬ ঘণ্টা।গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়ার সুজায়েতপুরে বগুড়া-লালমনিরহাট পথের পদ্মরাগ এক্সপ্রেস ট্রেনের হোসপাইপ খুলে ফেলেন হরতালকারীরা। মঙ্গলবার রাতে অবরোধ-সমর্থকেরা বগুড়া রেলস্টেশনে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাঙচুর করেন। বগুড়ায় গতকাল হরতাল ডেকেছিল ১৮-দলীয় জোট। সোমবার গভীর রাতে ঈশ্বরদীতে আগুনে পুড়িয়ে দেওয়া হয় সিরাজগঞ্জ এক্সপ্রেসের তিনটি বগি।মঙ্গলবার রাতে কিশোরগঞ্জের বাজিতপুরের গাজীরচর এলাকায় ফিশপ্লেট খুলে ফেলায় ময়মনসিংহের সঙ্গে ভৈরব, চট্টগ্রাম, সিলেট পথে পাঁচ ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। এ পথে বেশ কয়েকটি মেইল ও লোকাল ট্রেন চলাচল করে। গতকাল সকালে সিরাজগঞ্জের হরিপুরে কয়েক ফুট রেললাইন কেটে ফেলা হয়। এমন ঘটনা সোমবার রাত থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে ঘটেছে।সময়সূচিতে বিপর্যয় ও যাত্রী দুর্ভোগ: গতকাল বিকেল চারটা পর্যন্ত ঢাকা থেকে নয়টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। মঙ্গলবারও ঢাকা থেকে বিভিন্ন গন্তব্যের ১২টি ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়।যেসব পথে নাশকতা হয়েছে, সেসব পথের ট্রেনের যাত্রা বাতিল করা হয়েছে। আর যেসব পথ চালু আছে, সেগুলোতে শুরু হয়েছে সময়সূচি বিপর্যয়। লালমনিরহাট থেকে মঙ্গলবার রাত ১০টায় লালমনি এক্সপ্রেসের কমলাপুরে পৌঁছার কথা থাকলেও সেটি পৌঁছেছে গতকাল সকাল আটটায়। ২৯টি ট্রেন ৫০ মিনিট থেকে ১২ ঘণ্টা পর্যন্ত দেরিতে ঢাকা ছেড়ে যায়। সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে বিপর্যয় কাটাতে অন্তত ১০ দিন লাগবে বলে জানিয়েছেন রেলের কর্মকর্তারা।গতকাল রেলমন্ত্রী সাংবাদিকদের জানান, রেলে নাশকতা ঠেকাতে র‌্যাব, পুলিশ বাহিনীর পাশাপাশি ৮০০ আনসার সদস্যকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে মুঠোফোনের মাধ্যমে রেলের সম্পদ রক্ষায় সচেতনতা বাড়াতে খুদে বার্তা (এসএমএস) দেওয়া হচ্ছে।আয় কমেছে: গত দুই দিনে ২১টি ট্রেনের যাত্রা বাতিলের কারণে ২৫ থেকে ৩০ হাজার যাত্রী ঢাকা থেকে নিজ নিজ গন্তব্যে যেতে পারেননি। আগে বিক্রি হওয়া এসব টিকিট ফেরত দিয়ে কাউন্টার থেকে টাকা তুলে নিয়েছেন যাত্রীরা। মঙ্গলবার কমলাপুর স্টেশন থেকে যাত্রীদের নয় লাখ ৪৯ হাজার টাকা ফেরত দেওয়া হয়েছে। একইভাবে চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে মঙ্গলবার কমপক্ষে সাত হাজার যাত্রী দূরপাল্লার ট্রেনে চড়ে গন্তব্যে যেতে পারেননি। এ স্টেশনে ছয় লাখ ৭২ হাজার টাকা যাত্রীদের ফেরত দেওয়া হয়েছে। সিলেট স্টেশন থেকে প্রায় তিন হাজার যাত্রী এক লাখ ৮১ হাজার টাকা ফেরত নিয়েছেন।গতকাল চট্টগ্রাম স্টেশন থেকে মহানগর গোধূলী ট্রেনে চড়ে ঢাকা যাওয়ার কথা থাকলেও টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা নিয়েছেন ব্যবসায়ী সাইদ বিন সাত্তার। তিনি বলেন, হরতালে গেলেও অবরোধে যাওয়ার সাহস পাচ্ছেন না।দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে সাতক্ষীরার চারটি আসনের দুটিতে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় আওয়ামী লীগের প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন। যে দুটিতে নির্বাচন হচ্ছে ওই সব এলাকায় জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের হামলার আশঙ্কা থাকায় তেমন প্রচারণা নেই। এ কারণে নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের মধ্যে তেমন আগ্রহ বা উত্সাহও নেই।পরিস্থিতি থমথমে থাকায় সাতক্ষীরা-২ আসনের প্রার্থীরা এখনো পৌর এলাকার বাইরে প্রচারণায় যেতে পারছেন না। সাতক্ষীরা-১ আসনের প্রার্থীরা অনেক এলাকায় স্বাভাবিকভাবে প্রচারণা চালাতে পারছেন না।জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, সাতক্ষীরার চারটি আসনের মধ্যে সাতক্ষীরা-৩ (আশাশুনি, দেবহাটা ও কালীগঞ্জের একাংশ) আসনে আ ফ ম রুহুল হক ও সাতক্ষীরা-৪ আসনের (শ্যামনগর ও কালীগঞ্জের একাংশ) জগলুর হায়দার বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত হয়েছেন।সাতক্ষীরা-১ (তালা-কলারোয়া) আসনে ১৪ দলের মনোনীত প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির মুস্তফা লুত্ফুল্লাহ ও বিদ্রোহী প্রার্থী সৈনিক লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক সরদার মুজিব। সাতক্ষীরা-২ (সাতক্ষীরা সদর) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনীত প্রার্থী মীর মোস্তাক আহমেদ ও বিদ্রোহী প্রার্থী ছাইফুল করিম, ন্যাপের প্রার্থী জেলা ন্যাপের সাধারণ সম্পাদক কাজী সাইদুর রহমান এবং জাতীয় পার্টির (জেপি) জেলা সভাপতি মহাসিন হোসেন।মুস্তফা লুত্ফুল্লাহ জানান, তালা উপজেলার ইসলামকাটি ও কলারোয়া উপজেলার জয়নগর, কুশখালী, যুগীখালী ও দিয়াড়া ইউনিয়নে আওয়ামী লীগসহ ১৪ দলের নেতা-কর্মীরা জামায়াত-শিবিরের হুমকি-ধমকিতে এলাকায় থাকতে পারছেন না। তালার নুরুল্লাপুর গ্রামে জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা গত শনিবার তাঁর প্রচার মাইক ভাঙচুর করেছেন।কলারোয়ার যুগীখালী গ্রামের কৃষক আবদুল জলিল বলেন, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় থাকার পরও দলটির নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা খুন হচ্ছেন; বাড়িতে থাকতে পারছেন না। তাই ভোট দিতে যাওয়া মানে নিজের বিপদ ডেকে আনা। জয়নগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান শেখ ফিরোজ আহমেদ বলেন, ‘আমি নিজেই চার মাস ধরে বাড়ি ছাড়া। যেখানে আমার এই অবস্থা, সেখানে সাধারণ মানুষের মধ্যে কীভাবে ভোট দেওয়ার উত্সাহ থাকবে?’ইসলামকাটি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সুভাষ সেন বলেন, ‘ভয়ে দীর্ঘদিন থেকে তালা সদরে এক আত্মীয়ের বাড়িতে থাকছি। এলাকায় যেতে পারছি না। ভোট নিয়ে ভাবব কী করে।’সাতক্ষীরা-২ আসন সদর উপজেলার ১৪টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত। ২৪ ডিসেম্বর পর্যন্ত আওয়ামী লীগের প্রার্থী মোস্তাক আহমেদ, বিদ্রোহী প্রার্থী সাইফুল করিম ও ন্যাপের প্রার্থী সাইদুর রহমান পৌর এলাকার বাইরে প্রচারণা চালাতে যাননি। তাঁরা জানান, উপজেলার ১৪টি ইউনিয়নের মধ্যে ১০টিতে প্রচারণা চালানোর মতো পরিবেশ নেই। এখন তাঁরা পৌরসভার ভেতরে মাইকিং ও প্রচারপত্র বিলি করছেন। তবে জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী মহাসিন হোসেন বলেন, পৌরসভার বাইরে তিনি কয়েকটি ইউনিয়নে গণসংযোগ করেছেন।
এই মুহূর্তে লা লিগার সবচেয়ে বেশি গোল কার? লিওনেল মেসির সঙ্গে কিন্তু আরও একজন আছেন। নিশ্চয়ই ভাবছেন ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো ছাড়া আবার কে? না, রোনালদো নন, নন পেদ্রো-ইসকোদেরও কেউ। মেসির সঙ্গে একই সঙ্গে এখন একসঙ্গে নাম নিতে হবে ডিয়েগো কস্তার। ছয় ম্যাচে সাত গোল করে এই মুহূর্তে যৌথভাবে লা লিগার শীর্ষ গোলদাতা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ স্ট্রাইকার।হঠাৎ কস্তাকে নিয়ে পড়ার কারণ, মধুর একটা বিড়ম্বনায় পড়েছেন তিনি। তাঁর এখন ‘শ্যাম রাখি না কুল রাখি’ অবস্থা। ব্রাজিল না স্পেন, কোন দেশের হয়ে খেলবেন এই সিদ্ধান্ত নেওয়া তো সহজ ব্যাপার নয়। একটি ইতিহাসের সফলতম দল, অন্যটি সাম্প্রতিক কালের সেরা। সেই দুই দলই এখন চাইছে কস্তাকে। এমন ভাগ্য কজনের হয়!দুই বছর আগেও একরকম অজ্ঞাতকুলশীল কস্তা এখন অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের আক্রমণভাগের সারথি। গত দুই মৌসুম ফ্যালকাওয়ের ছায়ায় ঢাকা পড়ে ছিলেন বটে, কিন্তু বলার মতো কীর্তিও ছিল। ৮ গোল করে গত মৌসুমের কোপা দেল রেতে সর্বোচ্চ গোলদাতা ছিলেন। আর এবার তো ডেভিড ভিয়াকে আড়াল করে পাদপ্রদীপের সবটুকু জুড়েই আছেন।২৪ বছর বয়সী স্ট্রাইকারের জন্ম, বেড়ে ওঠা সবই ব্রাজিলে। ক্যারিয়ারের শুরু বার্সেলোনায়। না, মেসির বার্সেলোনা নয়, এই বার্সেলোনা সাও পাওলোর একটা ক্লাব। সেখান থেকে পাড়ি জমান পর্তুগালের ব্রাহায়। এরপর ২০০৭ সালে চলে আসেন অ্যাটলেটিকোতে। তখনো খুব বড় কিছু হয়ে ওঠার প্রতিশ্রুতি সেভাবে দেখা যায়নি। ডিয়েগো সিমিওনে অ্যাটলেটিকোর কোচ হয়ে আসার পরই যেন বদলে যান কস্তা।মজার ব্যাপার, কস্তা কিন্তু এরই মধ্যে ব্রাজিলের জার্সি গায়ে চড়িয়েছেন। গত মার্চেই ইতালি ও রাশিয়ার বিপক্ষে প্রীতি ম্যাচের জন্য কস্তাকে ডেকেছিলেন লুইস ফেলিপে স্কলারি। ইতালির বিপক্ষে বদলি হিসেবে নেমেওছিলেন। এরপর অবশ্য উপেক্ষিতই। ডাক পাননি কনফেডারেশনস কাপেও।গত জুলাইতেই পেয়ে গেছেন স্পেনের নাগরিকত্ব। স্প্যানিশ দৈনিক এল পাইস জানিয়েছে, কস্তাকে স্পেনের হয়ে খেলানোর জন্য প্রয়োজনীয় দালিলিক কাজও সেরে রেখেছে স্প্যানিশ ফুটবল ফেডারেশন। কস্তা এখনো চূড়ান্ত কিছু জানাননি। কিন্তু ব্রাজিলিয়ান ওয়েবসাইট ল্যান্সকে বলেছেন, ‘দেল বস্ক বললে আমি কীভাবে না করতে পারি! তবে আমি সেই দলটাকেই বেছে নেব, যেখানে খেলতে আমি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি।’ মনে হচ্ছে, পূর্বসূরি মার্কোস সেনার পথেই হয়তো হাঁটতে যাচ্ছেন। ব্রাজিলে জন্মানো সেনা আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলেছেন স্পেনের জার্সি গায়ে।তবে কস্তার স্পেনের হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাটাই ক্ষুব্ধ করে তুলেছে স্কলারিকে। তিনি কাঠগড়ায় দাঁড় করিয়েছেন ফিফাকে, ‘ফিফা সম্ভবত ৪০, ৫০ বা ৬০-এর দশকে ফিরে যাচ্ছে। তখন মাজ্জোলা (সান্দ্রো) ব্রাজিল ও ইতালির হয়ে খেলেছিলেন। ডি স্টেফানো খেলেছিলেন আর্জেন্টিনা, কলম্বিয়া ও স্পেনের হয়ে। পুসকাস হাঙ্গেরি ও স্পেনের হয়ে। আমি যদি ভুল না করি পারজিনহোও। এক বা দুই বছরের মধ্যে এখন একটা দেশ সম্ভবত ২০ জন খেলোয়াড়ের সঙ্গে চুক্তি করে দল দাঁড় করিয়ে ফেলবে। আমি একটু অবাকই।’কস্তার পথ ধরে ভবিষ্যতে আরও ব্রাজিলিয়ান প্রতিভাকে হারানোর ভয় থেকেই কি কথাগুলো বললেন স্কলারি! ওয়েবসাইট।গাজীপুর নগরের কোনাবাড়ীর রাজাবাড়ী এলাকায় গত রোববার দিবাগত রাতে ডাকাতি করে পালানোর সময় এক ব্যক্তিকে আটক করে পিটুনি দেন এলাকাবাসী। গাজীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সোমবার সকালে আবদুল মালেক (৪২) নামের ওই ব্যক্তির মৃত্যু হয়।ডাকাতির শিকার ব্যবসায়ী তোফাজ্জল হোসেনের শ্যালক মো. নাজু মিয়া জানান, রোববার দিবাগত রাত দুইটার দিকে লাঠিসোঁটাসহ ১২-১৩ জন ডাকাত রাজাবাড়ী এলাকায় তোফাজ্জলের বাড়িতে হানা দেয়।কোনাবাড়ী পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক (এসআই) মো. রবিউল ইসলাম জানান, ডাকাতেরা তোফাজ্জলের ঘরে ঢুকে তোফাজ্জল ও তাঁর স্ত্রীকে আটকে মারধর করে। এ সময় দুই ছেলে পারভেজ ও পলাশ এলে ডাকাতেরা তাঁদের ওপরও হামলা চালায়। তাঁদের চিৎকারে লোকজন ছুটে এলে ডাকাতেরা পালাতে থাকে। এলাকাবাসী ডাকাত দলের সদস্য মালেককে আটক করে এবং গণপিটুনি দিয়ে পুলিশে সোপর্দ করে। গাজীপুর সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল সকাল নয়টায় মালেকের মৃত্যু হয়।কক্সবাজার শহরের টেকপাড়ার কালুরদোকান এলাকায় গতকাল বেলা সাড়ে ১২টার দিকে ছাত্রলীগের অবরোধ-বিরোধী মিছিল থেকে একাধিক গুলিবর্ষণের ঘটনায় চার পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা এ কথা জানিয়েছেন।তবে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি আলী আহমদ বলেন, ছাত্রলীগের মিছিলটি কালুরদোকান পর্যন্ত গেলে ছাত্রশিবিরের ক্যাডাররা গুলিবর্ষণ শুরু করে। এতে চার পথচারী গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।কুষ্টিয়া-৩ আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী ও দলটির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফের সদর উপজেলার হরিপুর ইউনিয়নের একটি নির্বাচনী ক্যাম্পে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত শুক্রবার দিবাগত রাতে এ ঘটনা ঘটে।পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্রে জানা গেছে, মাহবুব উল আলমের পক্ষে প্রচারণা চালানোর জন্য ১৪ দলের শরিক জাসদের নেতা-কর্মীরা হরিপুর ইউনিয়নের দি ওল্ড কুষ্টিয়া হাইস্কুলের সামনে একটি ক্যাম্প স্থাপন করেন। গত শুক্রবার রাত সাড়ে ১২টার দিকে কে বা কারা ক্যাম্পের পেছন ও সামনের ব্যানারে আগুন ধরিয়ে দিয়ে পালিয়ে যায়। এ সময় এলাকার নৈশপ্রহরীরা সেখানে এসে দ্রুত আগুন নিভিয়ে ফেলেন।সদর উপজেলা সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা খোদেজা খাতুন জানান, আগুনে ব্যানারের কিছু অংশ পুড়ে গেছে। এ ছাড়া তেমন কোনো ক্ষয়ক্ষতি হয়নি।সদর থানার ওসি বেলায়েত হোসেন জানান, ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। জাসদের কুষ্টিয়া শাখার সভাপতি গোলাম মহসিন বলেন, স্থানীয় জাসদ নেতা-কর্মীদের মাঝে নির্বাচনী ক্যাম্প স্থাপন নিয়ে হালকা বিরোধ ছিল। নিজেদের ভুল বোঝাবুঝির কারণে এমনটি হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পোশাকশ্রমিকদের ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা করার দাবি জানিয়েছেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির আইনবিষয়ক সহসম্পাদক ও নারায়ণগঞ্জ জেলা কমিটির সভাপতি তৈমুর আলম খন্দকার। গতকাল শুক্রবার দুপুরে নারায়ণগঞ্জ প্রেসক্লাবের সামনে আয়োজিত এক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ দাবি জানান।অবিলম্বে শ্রমিক-মালিকদের যৌথ স্বার্থ রক্ষা করে ন্যূনতম মজুরি ঘোষণার দাবিতে বিএনপি-সমর্থিত বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গার্মেন্টস শ্রমিক দল ওই মানববন্ধনের আয়োজন করে।সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে তৈমুর আলম খন্দকার আরও বলেন, নৌপরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খানের বক্তব্যের পর থেকেই দেশের বিভিন্ন স্থানে শ্রমিক অসন্তোষের সৃষ্টি হয়েছে। গত কয়েক দিন বিভিন্ন শিল্পাঞ্চলে যেসব ঘটনা ঘটেছে, তা সরকার তার এজেন্ট দিয়ে ঘটিয়ে শ্রমিকদের ওপর চাপানোর চেষ্টা করছে।গার্মেন্টস শ্রমিক দল জেলা কমিটির সভাপতি ইসমাইল হোসেন কাউসারের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে আরও বক্তব্য দেন নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক এ টি এম কামাল, বিএনপির নেতা জান্নাতুল ফেরদৌস, জেলা শ্রমিক দলের আহ্বায়ক নজরুল ইসলাম, গার্মেন্টস শ্রমিক দল জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক কামরুল হাসান, যুগ্ম সম্পাদক মো. খোকন প্রমুখ।এদিকে সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্ট সকালে ন্যূনতম মজুরি আট হাজার টাকা করা, ট্রেড ইউনিয়ন অধিকার প্রতিষ্ঠা ও সংশোধিত শ্রম আইন বাতিলের দাবিতে সদর উপজেলার সিদ্ধিরগঞ্জের গোদনাইল চৌধুরীবাড়ি এলাকায় মানববন্ধন করে।এ সময় তৌহিদুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে বক্তব্য দেন শ্রমিক ফ্রন্টের জেলা সংগঠক সেলিম মাহমুদ, জাহাঙ্গীর আলম, এস এম কাদির, মোবারক হোসেন, আফরোজা বেগম প্রমুখ।মানববন্ধন শেষে সিদ্ধিরগঞ্জে মিছিল বের করেন সমাজতান্ত্রিক শ্রমিক ফ্রন্টের নেতা-কর্মীরা।ফিটফাট পোশাক পরে বের হচ্ছেন, কিসের যেন কমতি রইল। পছন্দের সুগন্ধির কয়েক ফোঁটা মেখে নিলেন। ব্যস, এখন সব ঠিকঠাক।একদিকে অত্যন্ত দামি সুগন্ধি যেমন বাজারে পাওয়া যায়। অন্যদিকে বেশ কম দামেও পাওয়া যায় নানা ব্র্যান্ডের সুগন্ধি। সাধ ও সাধ্য মিলিয়ে যেমনটি পছন্দ তেমন সুগন্ধি এখন চাইলেই মেলে।বাজার ঘুরে দেখা গেল, মেয়েদের কাছে নিনা রিচি, ফিফথ এভিনিউ (এলিজাবেথ আরডেন), শ্যানেল ব্র্যান্ডগুলো বেশ জনপ্রিয়। আর পুরুষদের কাছে কদর ভারসাচে, আরমানি, হুগো বস, ডেভিড অফ, অ্যাডিডাস, পোলো ইত্যাদির। এই সুগন্ধিগুলো এক হাজার ৫০০ থেকে তিন হাজার ৫০০ টাকার মধ্যে পাওয়া যায়। রুচি ও পছন্দ অনুযায়ী এসব সুগন্ধি চাইলেই এক লহমায় বাড়িয়ে দিতে পারে আপনার ব্যক্তিত্বকে।কখন কোন ধরনের সুগন্ধি ব্যবহার করতে হবে, জানতে চাইলে ফ্যাশন ডিজাইনার শাহরুখ আমিন বলেন, ‘ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলিয়েই পারফিউম ব্যবহার করা উচিত। দিনের বেলায় ব্যবহার করতে পারেন লাইম কিংবা স্পাইসি ধরনের সুগন্ধি। আর রাতে বেছে নিন একটু কড়া ধাঁচের সুগন্ধি। এ ছাড়া পরিবেশ অনুযায়ী আলাদা সুগন্ধি ব্যবহার করতে হয়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, অফিস-আদালতে হালকা গন্ধের সুগন্ধি দেওয়া ভালো। বিয়েবাড়িতে কড়া গন্ধযুক্ত পারফিউম ব্যবহার করা যায়। শেষ কথা হলো, এমন পারফিউম ব্যবহার করতে হবে যেন আপনার ব্যক্তিত্বের সঙ্গে মিলে যায়।’সুগন্ধি কেনার সময় ভালো করে গন্ধটা বুঝে নিতে চাইলে, সাদা কাগজে স্প্রে করে নিন। বাতাসে শুকিয়ে গন্ধ নিলে আসল গন্ধটা আপনি উপভোগ করতে পারবেন। আর শরীরে পারফিউম সেপ্র করার সময় যদি গড়িয়ে পড়ে যায়, বুঝতে হবে সুগন্ধিটির মেয়াদ ফুরিয়ে এসেছে।সুগন্ধি সেপ্র করার সময় একটু দূর থেকে স্প্রে করতে হয়। এতে গন্ধটা ভালো ছড়ায়। আর বেশি দিন রেখে দেওয়া সুগন্ধি ব্যবহার করলে কাপড়ে দাগ বসতে পারে। ব্যবহার করার পর পারফিউম স্বাভাবিক তাপমাত্রার কোনো জায়গায় সংরক্ষণ করুন। সুগন্ধিটি ভালো থাকবে অনেক দিন।চট্টগ্রাম নগরে গতকাল বুধবার দিনভর বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষে কমপক্ষে ২৫ জন আহত হয়েছে। নগরের এ কে খান মোড়, কর্ণেলহাট, নিমতলা, কাজীর দেউড়িসহ বিভিন্ন এলাকায় এসব সংঘর্ষ হয়।এ সময় শতাধিক গাড়ি ও দোকান ভাঙচুর করা হয়। আগুন দেওয়া হয় পাঁচটি মোটরসাইকেলসহ ছয়টি গাড়িতে। এসব কারণে গতকাল দ্বিতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম সারা দেশ থেকে কার্যত বিচ্ছিন্ন ছিল।সংঘর্ষ: সকাল নয়টার দিকে বিরোধী দলের কর্মীরা কর্ণেলহাট ও সিটি গেট এলাকায় রাস্তার ওপর বড় বড় গাছ ফেলে অবরোধ করে। এ সময় পুলিশের সঙ্গে তাঁদের সংঘর্ষ শুরু হয়। পুলিশকে লক্ষ্য করে অবরোধ-সমর্থকেরা ককটেল ও পাথর ছুড়তে থাকে। এ সময় পুলিশও পাল্টা টিয়ার গ্যাসের শেল ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে। পুলিশের ধাওয়া খেয়ে অবরোধ-সমর্থকেরা বিভিন্ন অলিগলিতে ঢুকে পড়ে। পরে সেখান থেকে তারা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়তে থাকে। পরে পুলিশ সরে গেলে তাঁরা আবার রাস্তায় উঠে আসে। এ সময় কয়েকজন অবরোধ-সমর্থকের হাতে আগ্নেয়াস্ত্রও দেখা যায়।বেলা ১১টার দিকে পুলিশের সঙ্গে বিজিবি ও র‌্যাব যোগ দেয়। কিন্তু অবরোধকারীদের কর্ণেলহাট থেকে হটানো যাচ্ছিল না। ওই সময় থেমে থেমে সংঘর্ষ চলে। অবরোধকারীরা এরই মধ্যে কর্ণেলহাট ও সিটি গেট এলাকায় আশপাশের দোকান এবং কয়েকটি গাড়ি ভাঙচুর করে। পাঁচটি মোটরসাইকেলে আগুন দেওয়া হয় এ সময়। পরে বেলা একটার দিকে অতিরিক্ত উপকমিশনার বাবুল আক্তারের নেতৃত্বে গোয়েন্দা পুলিশের বিশাল একটি দল অভিযানে অংশ নেয়। কিন্তু তার পরও অবরোধ-সমর্থকদের হঠানো যায়নি। পরে বিকেল সাড়ে চারটার দিকে সড়ক থেকে তাদের হঠিয়ে দেয় পুলিশ।এদিকে সকাল নয়টার দিকে কর্ণেলহাট থেকে কয়েক শ গজ দূরে অলঙ্কার মোড়ে বিরোধী দলের সমর্থকদের আরেকটি পক্ষ সড়ক অবরোধ করে। সেখানেও পুলিশের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। সেখান থেকে ধাওয়া দিলে অবরোধ-সমর্থকেরা এ কে খান মোড়ে অবস্থান নেন। সেখান থেকে তারা একটু পিছু হটে ইস্পাহানী গেট এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম রেললাইনের স্লিপারে আগুন দেয়। এ সময় সেখানে দুই পাশের দোকান ভাঙচুর করা হয়। দুপুর ১২টার দিকে বিরোধী দলের কর্মীদের ধাওয়া করে রাস্তা থেকে সরিয়ে দেয় পুলিশ।সিএমপির উপকমিশনার (পশ্চিম) সুজায়েত ইসলাম বলেন, পিকেটাররা যানবাহনে আগুন দেওয়ার পাশাপাশি দোকান ভাঙচুর করেছে। ইটপাটকেল ও ককটেল নিক্ষেপও করেছে তারা।এদিকে নগরের নিমতলা এলাকায় সকাল সাড়ে নয়টার দিকে সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ অবরোধ-সমর্থকদের ধাওয়া দিলে তারা সড়কের দুই পাশে রাখা ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানে ভাঙচুর চালায়। পুলিশ জানায়, এ সময় অন্তত ৫০টি ট্রাক ও কাভার্ড ভ্যানের সামনের কাচ ভাঙচুর করে তারা।গতকাল সকাল ১০টার দিকে নগরের ওয়াসা মোড়ে বিএনপি সমাবেশ করে। সমাবেশ থেকে ফেরার সময় কাজীর দেউড়ি এলাকায় বিএনপির নেতা-কর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ বেধে যায়। পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে তিনজন আহত হয়।মিরসরাইয়ে বাসে আগুন: মিরসরাই (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ে একটি বাসে আগুন দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গত মঙ্গলবার রাত প্রায় ১১টায় উপজেলার বারইয়ারহাট পৌর এলাকায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে এ ঘটনা ঘটে।সীতাকুণ্ডে গুলিবিদ্ধ ৪: সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, গতকাল সকালে সীতাকুণ্ড পৌর সদরের নুনাছড়া এলাকায় নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে অবরোধ-সমর্থকদের সংঘর্ষ হয়েছে।নুনাছড়া এলাকায় সংঘর্ষে বিজিবির সদস্য লুৎফর রহমান, পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) মিজানুর রহমান ও আনোয়ার হোসেন এবং অবরোধ-সমর্থক নাজিম উদ্দিন গুলিবিদ্ধ হন।সাতকানিয়া (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি জানান, অবরোধের দ্বিতীয় দিনেও চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-বাঁশখালী সড়ক ও সাতকানিয়া উপজেলার অভ্যন্তরীণ সড়কগুলোতে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের দেওয়া প্রতিবন্ধকতা সরাতে পারেনি পুলিশ।রাঙ্গুনিয়া (চট্টগ্রাম) সংবাদদাতা জানান, গতকাল সন্ধ্যায় রাঙ্গুনিয়ার রোয়াজারহাট বাজারে কাভার্ড ভ্যান পুড়িয়ে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। একই সময়ে শান্তিরহাট এলাকায় অবরোধ-সমর্থকদের ধাওয়ায় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে একটি পণ্যবাহী মিনি ট্রাক খাদে পড়ে যায়। এতে চালকসহ চারজন আহত হন।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া জংশনে গতকাল শনিবার দুপুর থেকে ঢাকাগামী একটি ট্রেন আটক ও ছেড়ে দেওয়া নিয়ে নাটকীয় ঘটনা ঘটেছে।দুপুর ১২টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকা মেইল আখাউড়ায় এলে সেটিকে আটকে দেওয়া হয়। ওই ট্রেনে সেনাবাহিনীর এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ছিলেন। বিজিবি ও গোয়েন্দাদের তত্পরতায় তিনটার দিকে ট্রেনটিকে আখাউড়া ছেড়ে যেতে দেওয়া হলেও সন্ধ্যায় ভৈরব থেকে ফেরত পাঠানো হয়।চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী তূর্ণা নিশীথাকে দুপুর ১২টার পর থেকে এবং ঢাকাগামী নোয়াখালী এক্সপ্রেসকে ভোর চারটা থেকে আখাউড়া স্টেশনে আটকে রাখা হয়।আখাউড়া জংশনের তত্ত্বাবধায়ক মোতালেব হোসেন বলেন, ‘ওপরের নির্দেশেই ট্রেন চলে। এখানে আমাদের কিছু করার নেই।’
চরমোনাই পীরের দল ইসলামী আন্দোলনের ছাত্রসংগঠন ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ছয় নেতাকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গতকাল শুক্রবার বিক্ষোভ মিছিল করতে গিয়ে সংগঠনের আরও তিন নেতা আটক হয়েছেন।প্রত্যক্ষদর্শী সূত্র জানায়, গতকাল বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে থেকে ইসলামী শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের ৩০-৩৫ জন নেতা-কর্মী মিছিল বের করেন। পুলিশ লাঠিপেটা করে মিছিলটি ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এ সময় সংগঠনের কেন্দ্রীয় সেক্রেটারি কে এম আনিসুজ্জামান, স্কুলবিষয়ক সম্পাদক আল-আমিন ও সদস্য শুয়াইব মিয়াকে আটক করে পুলিশ।গত বৃহস্পতিবার পুরানা পল্টন থেকে শাসনতন্ত্র ছাত্র আন্দোলনের কেন্দ্রীয় সভাপতি আরিফুল ইসলামসহ ছয় নেতাকে আটক করে র‌্যাব। পরে তাঁদের পল্টন থানায় সোপর্দ করা হয়।তাঁদের গ্রেপ্তারের কারণ জানতে চাইলে ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব ইউনূছ আহমাদ প্রথম আলোকে বলেন, আটক করে নিয়ে যাওয়ার সময় ব্যাবের সদস্যরা তাঁকে জানিয়েছেন, ছাত্ররা ফেসবুকে সরকারের বিরুদ্ধে নাকি প্রচারণা চালিয়েছে।খুলনা-বেনাপোল রেলপথের যাত্রীবাহী ট্রেনে অবাধে আসছে ভারতীয় পণ্য ও মাদকদ্রব্য। বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) ও রেল পুলিশকে ঘুষ দিয়ে চোরাকারবারিরা এসব পণ্য পরিবহন করছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। চোরাকারবারিদের দৌরাত্ম্যে যাত্রীরা অসহায় হয়ে পড়েছেন।এই প্রতিবেদক গত ২০ আগস্ট সকাল সাড়ে ছয়টায় খুলনা রেলস্টেশন থেকে ওই পথে চলাচলকারী বেনাপোল কমিউটার ট্রেনে ওঠেন। সকাল সাতটায় ট্রেনটি বেনাপোলের উদ্দেশে ছেড়ে আসে। দৌলতপুরে পৌঁছানোর পর পেছনের বগিতে খালি বস্তা হাতে উঠে পড়ে কিছু নারী-পুরুষ। একই দৃশ্য দেখা যায় যশোরের নওয়াপাড়া, ঝিকরগাছা ও নাভারণ স্টেশনে।ট্রেন যখন বেনাপোল স্টেশনে পৌঁছাল তখন সকাল নয়টা ৪০ মিনিট। নারীরা খালি বস্তা হাতে নেমে এদিক-ওদিক ছড়িয়ে পড়লেন। প্রায় এক ঘণ্টা পর পণ্যভর্তি বস্তা নিয়ে তাঁরা ট্রেনে ফিরে আসতে শুরু করেন। কিছুক্ষণের মধ্যে ট্রেনের সামনের বগির আসনের নিচ ও যাত্রীদের দাঁড়ানোর জায়গা ভরে গেল বস্তায়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চোরাকারবারি জানান, প্রতিদিন প্রায় ৫০টি (৪০ কেজির) চায়ের বস্তা, তুলার ১০টি বস্তা, চিনির ১০টি বস্তা, জিরার ১৫টি বস্তা, চালের ২০টি বস্তা এবং মাদকদ্রব্য ভর্তি শতাধিক পোটলা আনা হয়।চা বহনের কাজে জড়িত কুলসুম বেগম (ছন্দ নাম) বলেন, ‘গাড়ি ভাড়া, পুলিশ আর দালালগে দিয়ে মেলা (বেশি) টাকা থায়ে (থাকে) না। তারপরে মাঝে মাঝে র‌্যাব-বিজিবি আসে নিয়ে যায়। তার পরেও প্রতিদিন আড়াই শ টাহা লাভ হয়।’নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক চোরাকারবারী জানান, প্রতিদিন ৪০ জন চোরাকারবারি ও ৪০ জন বহনকারী ট্রেনে করে মাল আনে। বেনাপোল ও ঝিকরগাছার ২০-২৫ জন এসব পণ্য সরবরাহ করে। তবে তিনি তাঁদের নাম ও পরিচয় বলতে রাজি হননি।বেলা ১২টা ৪৮ মিনিটে ট্রেন যখন ছাড়ল তখন অধিকাংশ বগি ছোট-বড় বস্তায় ভর্তি। একটায় বেনাপোল থেকে যশোরের নাভারণ স্টেশনে গিয়ে থামল ট্রেনটি। দেখা গেল, আশপাশের বাড়ি থেকে বস্তা মাথায় নিয়ে কিছু নারী ও পুরুষ ছুটে আসছেন ট্রেনের দিকে। তাঁরা জানালা দিয়ে বগির ভেতরে ঠেলে দিতে লাগলেন এগুলো।ঝিকরগাছা স্টেশনেও একই দৃশ্য দেখা গেল। এরপর যশোর স্টেশনে ট্রেন থামতেই তড়িঘড়ি ওই বস্তা নামাতে শুরু করেন তাঁরা। যশোর স্টেশনেই বেশি মাল নামানো হয়। এরপর স্টেশনের বারান্দায় রেখে তা ভ্যানে করে নিয়ে যাওয়া হয়। নওয়াপাড়া, দৌলতপর ও খুলনা স্টেশনেও একইভাবে মাল নামানো হয়।খুলনা রেল পুলিশের চারজনের একটি দল খুলনা থেকে উঠেছিল সকালেই। তাদের সামনেই চোরাকারবারিরা অবৈধ পণ্য ও মাদকদ্রব্য ট্রেনে উঠিয়েছে। বেনাপোল থেকে ট্রেন ছাড়ার পর চাঁদা তুলতে শুরু করেন তাঁরা। মালের পরিমাণ অনুযায়ী প্রত্যেকের কাছ থেকে ২০-৪০ টাকা করে নেওয়া হয়।ট্রেনের পাঁচটি বগিতে ৪০০ আসন আছে। আসনের নিচ ও যাতায়াতের পথে বস্তা ফেলে রাখা হয়। তিনটি বগির আসন চোরাকারবারিদের দখলে থাকে। এ কারণে যাত্রীদের দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। এ বিষয়ে প্রদীপ রায় নামে এক যাত্রী বলেন, ‘আমি টিকিট কেটে স্ত্রী-পুত্র নিয়ে দাঁড়িয়ে যাচ্ছি, আর ওরা অবৈধ মাল নিয়ে বসে যাচ্ছে।’খুলনার স্টেশন মাস্টার আমিরুল ইসলাম বলেন, ‘এটা যাত্রীবাহী ট্রেন, মালবাহী নয়। এটা দেখার দায়িত্ব পুলিশের। তাদের কাছে জানতে চান কেন এভাবে মাল আসে, উত্তর পেয়ে যাবেন। তারা ব্যবস্থা না নিলে আমরা কী করব।’বিজিবির যশোর ২৬ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল মতিউর রহমান বলেন, ‘ওই ট্রেনে ভারত থেকে আনা কিছু চিনি, জিরা, চা ও কিশমিশ পরিবহন করা হয়। এটা নিয়ে আমরা বিব্রত। এগুলো বহনের কাজে নারীদের ব্যবহার করা হয়। অভিযান চালাতে গেলে তারা কাপড় ছিঁড়ে এবং মাথা ফাটিয়ে বিজিবির দোষ দেয়। তখন খুব বিপদে পড়তে হয়।’খুলনা রেল পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) একরাম আলী মোল্লা বলেন, ‘খাদ্যদ্রব্য এলে দেখে না দেখার ভান করতে ঊচ্চপর্যায় থেকে তাঁদের বলা হয়েছে।’ খুলনা মহানগর পুলিশ কমিশনার সফিকুর রহমান বলেন, ‘আমরা রেল পুলিশকে সব সময় অবৈধ পণ্য আটক করার নির্দেশ দিই।’চট্টগ্রাম নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের বাসায় গতকাল বুধবার রাতে তল্লাশি চালিয়েছে পুলিশ।অভিযানের সময় আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ঢাকায় অবস্থান করছিলেন বলে জানা গেছে। সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে তিনি বিমানে চড়ে ঢাকায় যান।সূত্র জানায়, সন্ধ্যার দিকে পুলিশ আমীর খসরুর নগরের মেহেদীবাগের বাসা ঘেরাও করে। রাত সাড়ে নয়টার দিকে পুলিশ বাসায় প্রবেশ করে। আধা ঘণ্টা তল্লাশি চালিয়ে পুলিশ কিছু না পেয়ে ফিরে যায়।প্রায় একই সময়ে নগর বিএনপির সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেনের ওয়ার সিমেট্রি-সংলগ্ন বাসায় এবং পাঁচলাইশে তাঁর চেম্বারে তল্লাশি চালায় পুলিশ। তল্লাশির সময় তিনি বাসা কিংবা চেম্বারে ছিলেন না।আমীর খসরুর ব্যক্তিগত সহকারী মোহাম্মদ সেলিম প্রথম আলোকে বলেন, ‘রাত সাড়ে নয়টা থেকে তল্লাশি অভিযান শুরু হয়। আধা ঘণ্টা ধরে স্যারের (আমীর খসরু) বাসা এবং তাঁর চার ভাই আবদুর রাজ্জাক মাহমুদ চৌধুরী, আমীর হুমায়ুন মাহমুদ চৌধুরী, শাহজাদা মাহমুদ চৌধুরী ও শাহনেওয়াজ মাহমুদ চৌধুরীর বাসায় তন্ন তন্ন করে তল্লাশি চালানো হয়। তবে এ সময় পুলিশ খারাপ আচরণ করেনি। রাত ১০টার দিকে পুলিশ চলে যায়।’কোতোয়ালি অঞ্চলের সহকারী পুলিশ কমিশনার মির্জা সায়েম মাহমুদ বলেন, ‘দুই প্লাটুন পুলিশ অভিযানে অংশ নেয়। ওপরের নির্দেশে আমরা সেখানে গিয়েছি। কাউকে আমরা না পেয়ে চলে এসেছি।’আমীর খসরু ও শাহাদাৎ হোসেন গতকাল চট্টগ্রামের কয়েকটি রাজনৈতিক কর্মসূচিতে সক্রিয়ভাবে অংশ নেন।আগামী ৫ জানুয়ারির নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী ইশতেহার ‘রূপকল্প-২০৪১’ ঘোষণা করেছে আওয়ামী লীগ। এতে বলা হয়, এ সময়ের মধ্যে বাংলাদেশকে মধ্যম আয়ের পর্যায় পেরিয়ে শান্তিপূর্ণ, সুখী-সমৃদ্ধ এক উন্নত জনপদে পরিণত করা হবে।বিরোধী দলবিহীন ‘একতরফা’ নির্বাচনের ভোট গ্রহণের এক সপ্তাহ আগে গতকাল শনিবার বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ৪৮ পৃষ্ঠার এই ইশতেহার উপস্থাপন করেন আওয়ামী লীগের সভানেত্রী ও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। তিনি স্বাধীনতা ও মুক্তির প্রতীক নৌকায় ভোট চেয়ে হত্যা-সন্ত্রাস, সংঘাত ও রক্তপাতের চির অবসানের আহ্বান জানান। এর আগে ২০০৮ সালের নির্বাচনের আগে ‘রূপকল্প-২০২১’ শিরোনামে ইশতেহার প্রকাশ করেছিল। তাতে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল, প্রতিবছর মন্ত্রী-সাংসদদের সম্পদের বিবরণী জনসম্মুখে প্রকাশ করা হবে। কিন্তু সে প্রতিশ্রুতি শেষ পর্যন্ত রক্ষা করেনি ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। আর এবারের ইশতেহারে এই প্রতিশ্রুতি রাখাই হয়নি। তবে সম্পদ, আয়-রোজগার সম্পর্কে সর্বস্তরের নাগরিকদের জবাবদিহি নিশ্চিত করা হবে বলে উল্লেখ করা হয়েছে।গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া সমুন্নত এবং নিরবচ্ছিন্ন উন্নয়ন নিশ্চিত করার মতো মৌলিক প্রশ্নে সব রাজনৈতিক দল, শ্রেণী ও পেশাজীবী সংগঠন এবং সুশীল সমাজসহ দলমত-নির্বিশেষে জাতীয় ঐকমত্য গড়ে তোলার উদ্যোগ এবং চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি, ঋণখেলাপি দুর্নীতি ও দুর্বৃত্তায়ন নির্মূলে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার অঙ্গীকার করা হয়েছে। বিরোধী দলের অসহযোগিতা, ধ্বংস ও সংঘাতের রাজনীতি শিরোনামের একটি অনুচ্ছেদে সারা দেশে হত্যা, সাম্প্রদায়িক সন্ত্রাস, হেফাজতে ইসলামকে মাঠে নামানো, পুলিশ ও বিজিবি সদস্যদের হত্যাসহ সাধারণ নাগরিকদের পুড়িয়ে মারার ঘটনায় বিএনপি-জামায়াতকে দায়ী করা হয়।‘এগিয়ে যাচ্ছে বাংলাদেশ’ শিরোনামের এই ইশতেহারে সুশাসন, গণতন্ত্রায়ণ ও ক্ষমতার বিকেন্দ্রীকরণের লক্ষ্যে ২৬ দফার অগ্রাধিকার কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়। এতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পন্ন ও শাস্তি কার্যকর এবং বিচার বানচাল করতে আন্দোলনের নামে হত্যা, সন্ত্রাস, অগ্নিসংযোগ, সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা, বৃক্ষ নিধনের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচারের অঙ্গীকার করা হয়েছে। সাম্প্রদায়িকতা ও জঙ্গিবাদ নির্মূল, সব ধর্মের শান্তিপূর্ণ সহাবস্থান এবং সাম্প্রদায়িক রাজনীতি ও প্রচার নিষিদ্ধ করার অঙ্গীকার করে বলা হয়, কোরআন ও সুন্নাহিবরোধী কোনো আইন করা হবে না। সব ধর্মের শিক্ষা ও মূল্যবোধের প্রতি যথাযথ সম্মান প্রদর্শন, প্রতি জেলা-উপজেলায় একটি করে উন্নত মসজিদ নির্মাণ এবং অন্যান্য ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানগুলো উন্নত করা হবে।বাংলাদেশের ভূখণ্ডে জঙ্গিবাদ, আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদী কোনো শক্তিকে প্রশ্রয় দেওয়া হবে না। সন্ত্রাস, জঙ্গিবাদ ও বিচ্ছিন্নতাবাদ মোকাবিলায় দক্ষিণ এশীয় দেশগুলোর পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি এবং এ ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অব্যাহত রাখা হবে। ইশতেহারে বলা হয়, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত এবং দারিদ্র্যের অনুপাত ১৫ শতাংশে নামিয়ে আনা হবে। প্রাথমিক শিক্ষার স্তর পঞ্চম থেকে অষ্টম শ্রেণীতে উন্নীত করে অবৈতনিক ও বাধ্যতামূলক করা হবে। ন্যাশনাল সার্ভিস কর্মসূচিকে পর্যায়ক্রমে সব জেলায় সম্প্রসারিত করা হবে। দ্রুতগতির ইন্টারনেট সেবার জন্য ফোর-জি চালু করা হবে।ইশতেহারে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু ও দ্বিতীয় যমুনা সেতু নির্মাণের কারিগরি ও অন্যান্য প্রস্তুতি দ্রুত সম্পন্ন করে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে এ দুটি সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করার ঘোষণা দেওয়া হয়। সংবাদপত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণাসহ প্রয়োজনীয় প্রণোদনা, অনলাইন পত্রিকা ও সামাজিক গণমাধ্যমের অপব্যবহার রোধ এবং দায়িত্বশীল ভূমিকা নিশ্চিত করতে প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে। ২০০৮ সালের নির্বাচনের সময় দেওয়া সব অঙ্গীকার বাস্তবায়ন করা হয়েছে বলে দাবি করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, অতীতের অন্ধকার ঘুচিয়ে বাংলাদেশ এখন আলোকোজ্জ্বল সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের পথে পা বাড়িয়েছে। তিনি আরেকবার দেশ সেবার সুযোগ চান। আশা প্রকাশ করেন, রাজনীতি থেকে হিংসা, হানাহানি, সংঘাতের অবসান হবে, দুর্নীতি, দুর্বৃত্তায়নের ধারা থেকে বাংলাদেশ বেরিয়ে আসবে। অনুষ্ঠানে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, নির্বাচন পরিচালনা কমিটির কো-চেয়ারম্যান এইচ টি ইমামসহ দলীয় নেতা, ঢাকায় নিযুক্ত কয়েকটি দেশের দূতাবাসের প্রতিনিধি প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠান উপস্থাপনা করেন দলের সংস্কৃতিবিষয়ক সম্পাদক আসাদুজ্জামান নূর।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আতিউর রহমানের বিরুদ্ধে ‘আদালত অবমাননা’ শিরোনামে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত সংবাদের ব্যাখ্যা দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।এতে বলা হয়েছে, সংবাদটির শিরোনাম এমনভাবে করা হচ্ছে, যাতে মনে হচ্ছে ইতিমধ্যে গভর্নর আদালত অবমাননা করেছেন। প্রকৃতপক্ষে তিনি হাইকোর্টের কোনো আদেশ বা নির্দেশ অমান্য করেননি। বরং হাইকোর্টের আদেশ কার্যকর করার জন্য তিনি সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে নির্দেশ দিয়েছেন। বিষয়টি রুল শুনানিকালে প্রমাণিত হবে।ছকে বাঁধা জীবনে উৎসব যেন এক খুশির বারতা। সেটির উদ্যাপনের জন্য তাই কত প্রস্তুতি। কিন্তু উৎসব শেষে আবার ব্যস্ত জীবনে ফিরে যাওয়ার কথা ভাবলেই যেন অবসাদ ঘিরে ধরে। সে অবসাদকে এক তুড়ি মেরে বিদায়ও করে দিতে পারেন আপনি নিজেই।হারমনি স্পার আয়ুর্বেদ ও রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা বলেন, ‘উৎসবের আমেজটা আমাদের দেহ ও মনকে যেমন নিমেষে প্রফুল্ল করে তোলে, তেমনি উৎসব শেষে সে কাজের চাপ আমাদের ত্বক, শরীর, হাত-পা, চুল সবখানেই ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে। সেটিকে চাপ হিসেবে না ভেবে বরং আনন্দের উদ্যাপন হিসেবে নিতে চেষ্টা করুন।’ফিট অ্যান্ড ফিটনেস জিমের (ব্যায়ামচর্চাকেন্দ্র) প্রশিক্ষক দয়িতা আক্তার বলেন, ‘শরীর যখন চনমনে থাকে কাজেও তখন সহজে মন বসে। এ জন্য ব্যায়ামের বিকল্প নেই। প্রতিদিন নিয়ম করে ৩০ মিনিট হাঁটতে পারেন। দক্ষ প্রশিক্ষকের তত্ত্বাবধানে যোগব্যায়ামের চর্চাও করতে পারেন।’উৎসবের দিনের ব্যস্ততার পরে শারীরিক ও মানসিক অবসাদকে দূর করে সুন্দর ও সজীব হয়ে ওঠার নানান পরামর্শ দিয়েছেন রূপবিশেষজ্ঞ রাহিমা সুলতানা।শারীরিক ও মানসিক অবসাদকে বিদায় সারা দিনের কাজের পর নিজের জন্য একটু সময় বের করে সহজ শিথিলায়ন বা শবাসন করতে পারেন। শবাসন করতে হলে, শ্বাস-প্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে শরীর শিথিল করে চিৎ হয়ে শুয়ে পা দুটো লম্বা করে ছড়িয়ে দিন। দুই পায়ের মাঝে এক হাত পরিমাণ জায়গা রাখুন। হাত দুটো দুই পাশে ও হাতের তালু ওপরের দিকে রাখুন। এরপর চোখ বন্ধ করে গভীরভাবে তিন-চারবার লম্বা দম নিয়ে ধীরে ধীরে দম ছাড়ুন। শবাসন করার সময় ভাবুন আপনার শরীর সম্পূর্ণ সুস্থ এবং আপনার খুব আরাম লাগছে। চাইলে উপুড় হয়েও শবাসন করতে পারেন। কাজ করতে করতে কাঁধের কাছে ব্যথা অনুভব করলে কাজ শেষে অথবা কাজে একটু বিরতি দিয়ে স্থিরাসন অথবা গোমুখাসন করতে পারেন। মেরুদণ্ড সোজা করে দুই পা সামনের দিকে ছড়িয়ে বসুন। এবার ডান হাত ডান কাঁধের ওপর নিয়ে এসে যতদূর পারেন পিঠের ওপর রাখুন। হাতের পাতা উপুড় অবস্থায় থাকবে। এবার বাম হাত কোমরের কাছ থেকে ঘুরিয়ে নিয়ে এসে পিঠের ওপর রাখা ডান হাতটি ধরতে চেষ্টা করুন। দম স্বাভাবিক রেখে ২০ থেকে ৩০ সেকেন্ড অবস্থান করুন। আবার বাম হাত ওপরে রেখে ডান হাত দিয়ে ধরার চেষ্টা করুন। এভাবে তিন-চারবার করলে ঘাড় এবং পিঠের ব্যথা থেকে অনেকটা আরাম পাবেন। অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কাজ করার ফলে হাঁটু বা গোড়ালিতে ব্যথা অনুভূত হলে পবনমুক্তাসন করতে পারেন। সোজা হয়ে শুয়ে পড়ুন। এবার নিঃশ্বাস স্বাভাবিক রেখে প্রথমে ডান পা তুলে হাঁটুর কাছে ভাঁজ করে বুকের কাছে এনে দুই হাত দিয়ে চেপে ধরুন। এভাবে ১০ থেকে ১৫ সেকেন্ড অবস্থান করুন। তারপর বাম পা ভাঁজ করে বুকের সঙ্গে লাগান। দুই পা সোজা করে মাটিতে রেখে আবার একত্রে দুই পা ভাঁজ করে বুকের কাছে নিয়ে এসে চেপে ধরুন। এভাবে তিন-চারবার করতে পারেন।ত্বক ও চুলের সজীবতায়তৈলাক্ত ত্বকের ফেসপ্যাক শসার রস ৪ চামচ, মধু ৪ চামচ, লেবুর রস ১ চামচ, গোলাপজল ১ চামচ, লাল আটা ২ চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে মুখমণ্ডলে ও ঘাড়ে লাগিয়ে ২০ মিনিট পর কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন। সব শেষে ঠান্ডা পানির ঝাপটা দিন। মসুর ডাল বাটা ৩ চামচ, শসার রস ১ চামচ, লেবুর রস আধা চামচ, ডিমের সাদা অংশ ১টি একসঙ্গে মিশিয়ে ত্বকে লাগান। শুকিয়ে গেলে কুসুম গরম পানির ঝাপটা দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। সবশেষে ময়েশ্চারাইজার লাগান।।স্বাভাবিক বা মিশ্র ত্বকের ফেসপ্যাক গাজর বাটা ৩ চামচ, বেসন ২ চামচ, মধু ২ চামচ, গোলাপজল ১ চামচ মিশিয়ে মিশ্রণটি মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলুন। তারপর ময়েশ্চারাইজার লাগান। চন্দন বাটা এবং গোলাপজল মিশিয়ে মুখে লাগান এবং ২০ মিনিট পর মুখ ধুয়ে ফেলুন।শুষ্ক ত্বকের ফেসপ্যাক ময়দা ১ চামচ, ডিমের কুসুম ১টি, জলপাই তেল ২ চামচ, গোলাপজল ১ চামচ একসঙ্গে মিশিয়ে মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে ফেলুন। মুখ মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগান। মধু ১ চামচ, ডিমের কুসুম ১টি, গ্লিসারিন ১ চামচ একত্রে ভালোভাবে মেশান এবং মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে ২০ মিনিট রেখে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।চুলের উজ্জ্বলতায় তৈলাক্ত চুলে ১ কাপ শিকাকাই ও আধা কাপ মেথি গুঁড়া একসঙ্গে মিশিয়ে লাগাতে পারেন। মাথায় ব্যবহার করার সময় এই মিশ্রণের কিছুটা নিয়ে ডিমের সাদা অংশের সঙ্গে মিশিয়ে শ্যাম্পুর মতো চুলে লাগান। কিছুক্ষণ রেখে ধুয়ে ফেলুন। রুক্ষ চুল যাঁদের তাঁরা খালি হাতে অথবা আঙুলের ডগায় তেল নিয়েও ম্যাসাজ করতে পারেন। এ ছাড়া ১টি পাকা কলা, ২ চামচ মধু, ২ চামচ জলপাই তেল, ২ চামচ দুধ একত্রে মিশিয়ে চুলে লাগাতে পারেন। ৩০ মিনিট রেখে চুল পরিষ্কার করে ফেলুন।হাত ও পায়ের সৌন্দর্যেসপ্তাহে অন্তত একবার ম্যানিকিওর ও পেডিকিওর করুন।প্রথমে নেইল পলিশ রিমুভার তুলাতে ভিজিয়ে প্রত্যেকটি নখে চেপে রাখুন। এভাবে নখের পুরোনো নেইল পলিশ তুলে ফেলুন। ফাইলার দিয়ে নখের কোনা থেকে মাঝের দিকে ঘষে ঘষে পছন্দমতো আকৃতি করে নিন। প্রয়োজনে নেইল কাটারের সাহায্য নিন। এবার শসার রস, গাজরের রস, চালের গুঁড়া, মধু, টকদই মিশিয়ে স্ক্রাব তৈরি করে হাতে চার-পাঁচ মিনিট ধীরে ধীরে ম্যাসাজ করুন। এটি ত্বকের মরা কোষ দূর করবে। ম্যাসাজ শেষে একটি কাচের বাটিতে কুসুম গরম পানি নিন। এরপর নখের ওপর পেট্রোলিয়াম জেলি লাগিয়ে হাত চার-পাঁচ মিনিট ডুবিয়ে রাখুন। একটি নরম নেইল ব্রাশ দিয়ে ধীরে ধীরে নখ এবং হাত ঘষুন। তারপর তোয়ালে দিয়ে হাত মুছে ফেলুন। এবার জলপাই তেল, গোলাপজল এবং গ্লিসারিন একঙ্গে মিশিয়ে ময়েশ্চারাইজার বানিয়ে হাতে এবং নখে ম্যাসাজ করুন। সবশেষে বাফার দিয়ে নখের ওপর ঘষে নিন। এতে নখের উজ্জ্বলতা বাড়বে।১৮-দলীয় জোটের অবরোধের দ্বিতীয় দিনে গতকাল বুধবার নোয়াখালী জেলা শহর মাইজদীতে পুলিশের সঙ্গে অবরোধ-সমর্থকদেরসংঘর্ষ হয়েছে। এ ছাড়া বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে অবরোধ-সমর্থকদের সঙ্গে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়েছে।এসব ঘটনায় পথচারীসহ শতাধিক ব্যক্তি আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই গুলিবিদ্ধ।বেলা পৌনে ১২টার দিকে শহরের পৌর বাজারে পুলিশ সুপার (এসপি) মো. আনিসুর রহমান, সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মশিউর রহমান ও সদর সার্কেলের সহকারী পুলিশ সুপার নিষ্কৃতি চাকমাসহ পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করে অবরোধকারীরা। তবে ককটেলটি বিস্ফোরিত হয়নি।সকাল ১০টা থেকে শহরের পৌর বাজার, রশিদ কলোনি এলাকায় অবরোধকারীদের সঙ্গে পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়। এ সময় পুলিশ অবরোধকারীদের ছত্রভঙ্গ করতে শর্টগান ও রাইফেল থেকে শতাধিক গুলি করে। এ সময় বিএনপি ও জামায়াতের কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন। তাঁদের মধ্যে অনেকেই গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।এদিকে বেগমগঞ্জের চৌমুহনীতে বেলা সাড়ে ১১টা থেকে বেলা আড়াইটা পর্যন্ত অবরোধকারীদের সঙ্গে আওয়ামী লীগের কর্মীদের ও পুলিশের দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়।পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশ তিন শতাধিক বেশি গুলি ছোড়ে। এসব ঘটনায় গুলি ও ইটের আঘাতে কমপক্ষে ৭০ জন আহত হয়।পুলিশ জানায়, শহরে শতাধিক এবং বেগমগঞ্জে প্রায় তিন শতাধিক গুলি নিক্ষেপ এবং সাতজনকে আটক করা হয়েছে।প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে কাল আগমনী ক্রীড়াচক্র ও ব্রাইট স্টার ক্লাব জয় পেয়েছে। রাজশাহী মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি স্টেডিয়ামে আগমনী (১৩০/৬) ৪ রানে বৈকালী সংঘকে (১২৬) পরাজিত করে। ম্যাচসেরা আগমনীর হাবিবুর। শহীদ কামারুজ্জামান বিভাগীয় স্টেডিয়ামে দিনের অন্য খেলায় ব্রাইট স্টার ক্লাব (১২৯/৯) ২৫ রানের ব্যবধানে দিগন্ত প্রসারী সংঘকে (১০৪/৬) হারিয়েছে। ম্যাচসেরা বিজয়ী দলের শশী। —রাজশাহী অফিস
নারায়ণগঞ্জে ইপিলিয়ন গ্রুপ দ্বিতীয় বিভাগ ফুটবল ফাইনালে টাইব্রেকারে ইসদাইর বন্ধন কোচিংকে ৫-৪ গোলে হারিয়ে চ্যাম্পিয়ন হয়েছে নারায়ণগঞ্জ স্পোর্টস একাডেমি।গতকাল শুক্রবার বিকেলে ইসদাইরের ওসমানী স্টেডিয়ামে খেলা শেষে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করেন ইপিলিয়ন গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রিয়াজউদ্দিন আল মামুন। জেলা ফুটবল অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি ও জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার আশরাফউদ্দিন চুন্নুর সভাপতিত্বে পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের সদস্য ও জাতীয় দলের সাবেক ফুটবলার শেখ মো. আসলাম, ইন্টার স্পোর্টস ম্যানেজিং পার্টনার মহিম হাসান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।লিগের সর্বোচ্চ গোলদাতার পুরস্কার পেয়েছেন বন্ধনের আরিফ। ম্যান অব দ্য ম্যাচ হয়েছেন নারায়ণগঞ্জ স্পোর্টস একাডেমির গোলরক্ষক হাবীব। নারায়ণগঞ্জ একাডেমি আগামী মৌসুমে প্রথম বিভাগে খেলবে।টুর্নামেন্টের পৃষ্ঠপোষক ইপিলিয়ন গ্রুপের পাশাপাশি কো-স্পনসর ছিল ইন্টার স্পোর্টস, ক্লেমন ও আমরা নেটওয়ার্ক লিমিটেড।বরগুনায় বিভিন্ন শিশুসদনের নামে জিআরের (মানবিক সহায়তা) চাল বরাদ্দ এনে বিক্রি করে একটি চক্র অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। প্রতিষ্ঠানপ্রধানদের যোগসাজশে চক্রটি দীর্ঘদিন ধরে এই লুটপাট চালাচ্ছে। এর মধ্যে বেশির ভাগ প্রতিষ্ঠানেই শর্তানুযায়ী পর্যাপ্ত এতিম নেই। আবার কিছু আছে নামসর্বস্ব।সংশ্লিষ্ট এতিমখানাগুলোর কর্মকর্তারা জানান, স্থানীয় সাংসদের ডিও লেটার (আধা সরকারি পত্র) নিয়ে আনোয়ার হোসেন ওরফে একিন আলী নামের এক ব্যক্তি মন্ত্রণালয় থেকে চাল বরাদ্দ আনেন। পরে নিজেই ডিলারদের কাছে তা বিক্রি করে খরচ বাবদ অর্ধেকের বেশি অর্থ নিয়ে নেন। আবার বরাদ্দ তালিকায় কিছু নামসর্বস্ব প্রতিষ্ঠান আছে, যেখানে কোনো অর্থই দেন না।তবে আনোয়ার হোসেন এসব অস্বীকার করে বলেন, ‘আমি এর সঙ্গে জড়িত নই। কেউ বলতে পারবে না যে আমি বরাদ্দ এনে অর্ধেক টাকা নিই।’জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা প্রকাশ চন্দ্র বিশ্বাস জানান, দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয় গত ১০ জুন বরগুনা সদর, আমতলী ও তালতলী উপজেলার ৫৫টি শিশুসদনের নামে তিন মেট্রিক টন করে মোট ১৬৫ মেট্রিক টন চালের বরাদ্দ ছাড় করে। সংশ্লিষ্ট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তারা যাচাই-বাছাই করে প্রতিবেদন দেওয়ার পর এসব প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ৫৫টিতে আরও দুই মেট্রিক টন করে চালের বরাদ্দ ছাড় দেওয়া হয়।সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নূর ই আলম বলেন, ‘শিশুসদনগুলোর নিবন্ধন যাচাই করে জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কাছে আমরা প্রতিবেদন দিয়েছি।’ আমতলীর ইউএনও মো. আবদুল্লাহ বলেন, ‘আমি তদন্ত করে তালিকাভুক্ত এতিমখানার নিবন্ধন যথাযথ পেয়েছি। কোনো অনিয়মের অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ সমাজসেবা অধিদপ্তরের নিয়ম অনুযায়ী ১০ জনের কম এতিম আছে—এমন প্রতিষ্ঠান সরকারি বরাদ্দ পাওয়ার ক্ষেত্রে অযোগ্য বলে বিবেচিত হবে।আমতলী উপজেলা মাদ্রাসা শিক্ষক সমিতি সাধারণ সম্পাদক ও তালতলী উপজেলার চন্দনতলা দাখিল মাদ্রাসার সুপার আবুল হোসেন বলেন, ‘আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে তিন উপজেলার বিভিন্ন এতিমখানার নামে জিআর বরাদ্দ আনার কাজ করছেন। এ জন্য তাঁকে অর্ধেক অর্থ দিতে হয়। বাকি অর্ধেক প্রতিষ্ঠান পায়।’জুন মাসে তিন মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ পাওয়া সদর উপজেলার কে শিংড়াবুনিয়া ইসলামিয়া শিশুসদনে সম্প্রতি গিয়ে দেখা যায়, সেখানে এতিমখানার কোনো কার্যক্রম নেই। পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক নেসার উদ্দীন বলেন, ‘আমাদের এখানে কোনো এতিম নেই। আমরা কোনো চাল পাইনি।’মধ্য কেওড়াবুনিয়া নাজির শিশুসদন ও দাখিল মাদ্রাসায় গিয়ে দেখা যায়, কাগজপত্রে মহিলা শিশুসদন হলেও এখানে শিক্ষার্থীই নেই। এতিমখানার নামে গত জুনে তিন মেট্রিক টন এবং চলতি মাসে আরও দুই মেট্রিক টন জিআরের চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়।নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এলাকার বেশ কয়েকজন জানান, রাতে কয়েকজন ছাত্র এই মাদ্রাসার ছাত্রাবাসে এসে পড়াশোনা করে। এসব ছাত্র বাড়ি থেকে ভাত নিয়ে আসে।এতিমখানার পরিচালক ও মাদ্রাসার সুপার গোলাম ফারুক বলেন, ‘আমাদের এতিমখানায় পাঁচ-ছয়জন ছাত্র থাকে। কিন্তু কোনো মেয়ে এতিম নেই। এখানে সমাজসেবা অধিদপ্তর থেকে নয়জন এতিমের নামে অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়।’সদরের সাহেবের হাওলা চাঁদবরু এতিমখানায় ১৬ জন এতিম আছে বলে প্রতিষ্ঠানটির পরিচালক ইব্রাহিম খলিল দাবি করলেও বাস্তবে তা পাওয়া যায়নি। প্রতিষ্ঠানটির নামে দুই দফায় মিলিয়ে পাঁচ মেট্রিক টন চাল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।বরগুনার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মোহাম্মদ আলী বলেন, এতিমদের নামে বরাদ্দ চাল আত্মসাৎ করা অন্যায়। কেউ অভিযোগ করলে অবশ্যই দায়ী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।বরগুনা-১ (সদর-আমতলী-তালতলী) আসনের সাংসদ ধীরেন্দ্র দেবনাথ বলেন, ‘জিআর সহায়তার চাল বাইরে বিক্রি করা বেআইনি। এটা দেওয়া হয় এতিম শিক্ষার্থীর খোরাকির জন্য। অনেক ব্যক্তি এতিমখানার সহায়তার জন্য আমার কাছে আসে। আমি ডিও লেটার দিই। এটার কেউ অপব্যবহার করলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’সুনামগঞ্জের আদালতের সহকারী জজ মো. মহিউদ্দিনকে পিটিয়েছেন র‌্যাব-১১ কুমিল্লার সদস্যরা। গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুমিল্লার নানুয়াদীঘির পাড়ে মহিউদ্দিনের শ্বশুরবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। কুমিল্লা সিটি করপোরেশনের বিএনপিদলীয় মেয়র মো. মনিরুল হক তাঁর চাচাশ্বশুর।জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরাম কুমিল্লা জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক কাইমুল হককে জামিন না দেওয়ায় গতকাল বুধবার আদালতে ভাঙচুর করেছেন তাঁর সমর্থিত আইনজীবীরা। এ ঘটনায় এক বিচারক আহত হয়েছেন।এলাকার অনেকে জানান, গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মহিউদ্দিন তাঁর স্ত্রীকে নিয়ে শ্বশুর শহীদুল হকের (মেয়র মনিরুলের বড় ভাই) বাসায় যান। ওই দিনই সেখানে র‌্যাব সদস্যরা হানা দেন। একপর্যায়ে মনিরুল ওই বাসায় আছেন কি না, তাঁরা জানতে চান। জবাবে ওই বিচারক বলেন, তিনি এ বাসার চারতলায় থাকেন। এরপর কিছু বুঝে ওঠার আগেই র‌্যাব তাঁকে পিটুনি দেওয়ার চেষ্টা চালায়। তিনি তাঁর পরিচয় দিলে র‌্যাব সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁর পিঠে, কোমরে ও পায়ে আঘাত করেন। পরে তাঁকে কুমিল্লা জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল বিকেলে তিনি ওই হাসপাতাল থেকে নিজ বাসা নগরের ধর্মসাগর পাড়ে ফিরে আসেন।মো. মহিউদ্দিন বলেন, ‘বিষয়টি আইন বিভাগের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে। পরিচয় দেওয়ার পরও র‌্যাব এভাবে মারবে, তা ভাবতেই পারিনি।’র‌্যাব-১১-এর অধিনায়ক মেজর মো. শাহেদ হাসানের মুঠোফোনে গতকাল রাত সোয়া আটটার দিকে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, ‘এ বিষয়ে আমি কোনো মন্তব্য করতে চাই না।’পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় মেয়র মনিরুলের ভাই কাইমুল ও জহিরুল হককে নগরের নানুয়াদীঘির পাড়ের নিজ বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে র‌্যাব। এরপর তাঁদের নগরের শাকতলা র‌্যাব কার্যালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়। রাতে তাঁদের থানায় নেওয়া হয়। এরপর গতকাল পুলিশ ৫৪ ধারায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁদের কুমিল্লার অতিরিক্ত মুখ্য বিচারিক হাকিম অম্লান কুসুম জিষ্ণুর আদালতে হাজির করেন। বিচারক তাঁদের জামিন নামঞ্জুর করেন। পরে তাঁর সমর্থক আইনজীবীরা এজলাসে হইচই শুরু করেন। আইনজীবীরা আদালত প্রাঙ্গণে মিছিল করেন। এ সময় তাঁরা বার লাইব্রেরির কয়েকটি জানালার কাচ ইট মেরে ভাঙচুর করেন। এ সময় ইটের আঘাতে আরেকটি আদালতের খাস কামরায় বসা স্পেশাল জজ আবুল হোসেন ব্যাপারী আহত হন। খবর পেয়ে জেলা প্রশাসক মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া ও পুলিশ সুপার টুটুল চক্রবর্তী ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।জাতীয়তাবাদী আইনজীবী ফোরামের সভাপতি কাজী নাজমুস সাদাত জানান, কোনো আইনজীবী আদালতের আসবাব ও জানালার কাচ ভাঙচুর করেননি।অনেক দিন মনে রাখার মতো একটি দিন কাটালেন নাথান লায়ন। মেলবোর্ন টেস্টের তৃতীয় দিনে কাল প্রথমবারের মতো দেশের মাটিতে ৫ উইকেট পেয়েছেন এই অফ স্পিনার। ইংল্যান্ডকে ১৭৯ রানে অলআউট করে জয়ের সুবাস পাচ্ছে দলও। স্টুয়ার্ট ব্রডকে ক্লার্কের ক্যাচ বানিয়ে ২৬ বছর বয়সী এই স্পিনার পেয়ে গেছেন টেস্ট ক্যারিয়ারের শততম উইকেটও। ব্রুস ইয়ার্ডলির অবসরের ৩০ বছর পর টেস্টে ১০০ উইকেট পাওয়া কোনো অফ স্পিনার পেল অস্ট্রেলিয়া। টেস্টে সবচেয়ে বেশি উইকেট নেওয়া অস্ট্রেলীয় অফ স্পিনার হিউ ট্রাম্বল (১৪১)। ২৯ ম্যাচে লায়নের শিকার ১০১ উইকেট।
ঝালকাঠি সদর উপজেলার বেরপাশা গ্রাম থেকে মো. হাফিজুল ইসলাম নামে এক যুবকের লাশ গতকাল শুক্রবার উদ্ধার করেছে পুলিশ। তিনি ওই গ্রামের মো. মোস্তফা হাওলাদারের ছেলে। পুলিশের ধারণা, বৃহস্পতিবার রাতে দুর্বৃত্তরা ধারালো অস্ত্র দিয়ে নিজ বাড়িতে কুপিয়ে হাফিজুলকে হত্যা করেছে।স্থানীয় ব্যক্তিরা জানান, পূর্বশত্রুতার জের ধরে প্রতিপক্ষরা রাতে ঘরে ঢুকে হাফিজুলকে কুপিয়ে পালিয়ে যায়। তাঁর অসুস্থ বাবা মোস্তফা হাওলাদার অন্য কক্ষে থাকায় বিষয়টি তিনি টের পাননি। সকালে তিনি ঘরের ভেতর ছেলের লাশ পড়ে থাকতে দেখেন। পরে স্থানীয় ব্যক্তিরা খবর দিলে পুলিশ গিয়ে লাশটি উদ্ধার করে।প্রায় ছয় মাস ধরে খোলা আকাশের নিচে ক্লাস করছে পটুয়াখালীর রাঙ্গাবালী উপজেলার ৮ নম্বর কোড়ালিয়া এ রহমান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের কোমলমতি শিক্ষার্থীরা। বিদ্যালয়ের ভবনটি জরাজীর্ণ হয়ে পড়ায় দুর্ঘটনার আশঙ্কায় শিক্ষার্থীদের শ্রেণীকক্ষের বাইরে ক্লাস করতে হচ্ছে।উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ১৯৪৫ সালে স্থাপিত এই বিদ্যালয়ে ১৯৯৩-৯৪ অর্থবছরে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) তত্ত্বাবধানে চার কক্ষবিশিষ্ট পাকা ভবন নির্মাণ করা হয়।বর্তমানে বিদ্যালয় ভবনের কলাম বিভিন্ন স্থানে ফেটে গিয়ে রড বের হয়ে গেছে। দেয়াল ও ছাদের পলেস্তারা প্রতিদিনই খসে পড়ছে। ভবনের উত্তর ও পূর্বাংশ হেলে পড়েছে।এ অবস্থায় ছয় মাস আগে উপজেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা দেবাশীষ ঘোষ বিদ্যালয় পরিদর্শনে এসে শ্রেণীকক্ষে পাঠদান ঝুঁকিপূর্ণ বলে মন্তব্য করেন।বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিনারা বেগম জানান, মার্চ মাস থেকেই খোলা আকাশের নিচে পাঠদান করা হচ্ছে। ২১ আগস্ট উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুসেন চন্দ্র হালদার বিদ্যালয়টি পরিদর্শন করে শ্রেণীকক্ষ পাঠদানের উপযোগী নয় বলে জানান।সম্প্রতি ওই বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, শ্রেণীকক্ষ থেকে বেঞ্চ বাইরে বের করে গাছের নিচে খোলা জায়গায় শিশুদের পাঠদান করা হচ্ছে।বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষিকা রাজিয়া বেগম জানান, ছাদ থেকে পলেস্তারা খসে কয়েকজন শিক্ষার্থী ও তিনি আহত হন।বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীর শিক্ষার্থী ভাবনা জানায়, প্রয়োজনীয় বেঞ্চ না থাকায় অনেকে দাঁড়িয়ে ক্লাস করছে।পঞ্চম শ্রেণীর শিক্ষার্থী জান্নাতুননেছা জানায়, বিদ্যালয়ের ভবনের খারাপ অবস্থার কারণে তাদের লেখাপড়ায় বিঘ্ন ঘটছে। সমাপনী পরীক্ষায় ভালোভাবে ক্লাস করতে না পারলে ফল ভালো হবে না।একই শ্রেণীর আরেক শিক্ষার্থী মো. শাকিল জানায়, বাইরে ক্লাস করতে গিয়ে অনেক সময় রোদে পুড়তে হয়। বর্ষা এলেই লেখাপড়া বন্ধের উপক্রম হয়।উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা সুসেন চন্দ্র হালদার বলেন, বিষয়টি নিয়ে উপজেলা পরিষদের সমন্বয় সভায় আলোচনা হয়েছে।জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়কের সংস্কারকাজ সাত মাস ধরে বন্ধ রয়েছে। ঠিকাদারেরা সড়কের এক কিলোমিটার অংশ সংস্কারের পর কাজ বন্ধ করে দেন। এতে ওই সড়ক দিয়ে চলাচলকারী লোকজনকে চরম ভোগান্তির শিকার হতে হচ্ছে।এলাকার অনেকে জানান, বিভাগীয় শহর সিলেট ও রাজধানী ঢাকার সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের একমাত্র পথ জগন্নাথপুর-বিশ্বনাথ-রশিদপুর সড়ক। এ সড়ক দিয়ে জগন্নাথপুরের তিন লাখ মানুষ যাতায়াত করে। ওই সড়কের জগন্নাথপুর অংশের ১৩ কিলোমিটার গর্ত ও খানাখন্দে ভরা। এতে সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে।স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সড়কের সংস্কারকাজের জন্য গত ২১ মার্চ দরপত্র আহ্বান করা হয়। সুনামগঞ্জের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান মেসার্স প্রীতি এন্টারপ্রাইজ দুই কোটি ২০ লাখ ৪০ হাজার টাকা বরাদ্দে সাত কিলোমিটার এবং জেবি নুরুল ইসলাম এন্টারপ্রাইজ এক কোটি ৬১ লাখ ২৭ হাজার টাকায় ছয় কিলোমিটার অংশের কাজ পায়। গত ২৫ এপ্রিল দুটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজ শুরু করে। জেবি নুরুল ইসলাম এন্টারপ্রাইজ জগন্নাথপুর সদর থেকে এক কিলোমিটার সংস্কার করার পর বর্ষা মৌসুমের কথা বলে কাজ বন্ধ করে দেয়। আর প্রীতি এন্টারপ্রাইজ সড়কটি খুঁড়ে ফেলে রাখে। এতে জনদুর্ভোগের সৃষ্টি হলে এলাকাবাসী স্থানীয় সাংসদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। সাংসদ ২৭ মে সড়ক পরিদর্শন করে তাৎক্ষণিকভাবে কাজ করার নির্দেশ দেন। পরে এলজিইডি গর্তগুলোতে ইটের খোয়া ফেলে সাময়িক সমাধান দেয়। ইটের খোয়াগুলো নষ্ট হয়ে যাওয়ায় বর্তমানে পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়েছে। এতে সড়কটি দিয়ে চলাচলকারী লোকজনের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে।জগন্নাথপুর উপজেলার পাটলী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সিরাজুল হক বলেন, ‘এলজিইডির দায়িত্বহীনতার কারণে সড়কের কাজ হয়নি।’ এলজিইডির উপজেলা (জগন্নাথপুর) প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম বলেন, ‘কাজ শুরুর পর বৃষ্টির কারণে ঠিকাদারেরা কাজ বন্ধ করে দেন। এখন তাঁদের কাজ শুরু করতে চিঠি দিয়েছি।’সুনামগঞ্জ-১ আসনে (তাহিরপুর-জামালগঞ্জ-ধরমপাশা) নির্বাচনী লড়াইয়ে মাঠে আছেন আওয়ামী লীগের দুজন। তবে দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেন ওরফে রতন। অপর প্রার্থী হলেন ক্ষমতাসীন দলেরই সাবেক সাংসদ সৈয়দ রফিকুল হক ওরফে সুহেল। তিনি লড়ছেন ফুটবল প্রতীক নিয়ে। এই দুই প্রার্থীকে নিয়ে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন স্থানীয় নেতা-কর্মীরা।দলীয় সূত্রে জানা গেছে, সাংসদ মোয়াজ্জেম হোসেনের বিরুদ্ধে মাঠে নেমেছেন ধরমপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল আউয়াল এবং জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মুক্তিযোদ্ধা ইউসুফ আল আজাদ। তাঁরা রফিকুলের পক্ষে গণসংযোগে অংশ নিচ্ছেন। প্রকাশ্যে না হলেও দলের মনোনয়নবঞ্চিত ব্যক্তিরাও ভেতরে ভেতরে এই পক্ষে আছেন। আর মোয়াজ্জেমের সঙ্গে দলীয় নেতা-কর্মীদের নিয়ে মাঠে আছেন জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও জামালগঞ্জ উপজেলার বাসিন্দা রেজাউল করিম ওরফে শামীম।এই আসনে গত নির্বাচনে মনোনয়ন পেয়ে সাংসদ নির্বাচিত হন মোয়াজ্জেম হোসেন। রফিকুল হক আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে সাংসদ নির্বাচিত হয়েছিলেন ১৯৯৬ সালে। এর আগে ১৯৭৯ সালে তিনি বিএনপির প্রার্থী হিসেবে আরেকবার এখান থেকে সাংসদ নির্বাচিত হন। এবার এই আসন থেকে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছিলেন ১৭ জন। কিন্তু শেষ পর্যন্ত মোয়াজ্জেমই মনোনয়ন পান।মনোনয়নবঞ্চিত এক নেতা বলেন, ‘দল না করলেও যে মনোনয়ন পাওয়া যায়, এটা এখানে দ্বিতীয়বার প্রমাণিত হলো। আমরা দল চালাব, মাঠে দিনের পর দিন কাজ করব, আর মনোনয়ন পাবে অন্যজন, এটা কীভাবে মেনে নিই?’জামালগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইউসুফ আল আজাদ বলেন, ‘আমরা ভালো মানুষের পক্ষ নিয়েছি। পাঁচ বছর এখানে এক ব্যক্তি শাসন করেছেন। দলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে তাঁর কোনো যোগাযোগ ছিল না। এখন দল এবং এলাকার স্বার্থেই সৈয়দ রফিকুলের পক্ষে অবস্থান নিয়েছি।’ ধরমপাশা উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল আউয়াল বলেন, ‘এখানে যাঁরা নির্বাচন করছেন, তাঁরা দুজনই আওয়ামী লীগ করেন। রফিকুল দলের সভানেত্রীকে তাঁর প্রার্থিতার কথা জানিয়ে এসেছেন। তিনি আমাকে ডেকেছেন, তাই তাঁর প্রচারণায় যোগ দিয়েছি। রতন ডাকেননি, তাই যাইনি।’জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল করিম বলেন, যাঁরা দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করছেন, তাঁরা এর আগেও সেটা করেছেন। এবার পদে থেকে যাঁরা দলীয় প্রার্থীর বিরোধিতা করবেন, তাঁদের বিরুদ্ধে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
রাজধানীর শান্তিনগর এলাকার চাকরিজীবী মো. কামাল উদ্দিনের হার্টে পাঁচটি ব্লক ধরা পড়েছে। চিকিৎসকেরা বলেছেন, তাঁর বাইপাস সার্জারি করতে হবে। এ জন্য প্রায় পাঁচ লাখ টাকা দরকার। এত টাকা সংগ্রহ করা তাঁর পক্ষে অসম্ভব। তাই তাঁকে আর্থিক সহযোগিতা দেওয়ার জন্য তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে দেশের বিত্তবান ব্যক্তিদের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা: মো. কামাল উদ্দিন, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর: ২৯৪০১০১০৫৩৬১৬ (অনলাইন), পূবালী ব্যাংক লিমিটেড, শান্তিনগর, ঢাকা। বিজ্ঞপ্তি।এত দিনে বিরক্তি ধরে যাওয়ার কথা। বাংলাদেশে পা রাখার পর থেকেই একই কথা শুনে আসছেন বারবার। প্রায় প্রতিটি সংবাদ সম্মেলনেই সরাসরি বা ঘুরেফিরে আসছে সেই প্রসঙ্গ। অতিভোজনে অমৃতেও অরুচি আসে। আর এটা তো লজ্জা আর তিক্ততার ইতিহাস। কাল ওয়ানডে সিরিজ শুরুর আগে সংবাদ সম্মেলনেও অবধারিতভাবে এল বাংলাওয়াশ বা ৪-০ প্রসঙ্গ। বারবার মনে করিয়ে দেওয়ায় বিরক্ত হতেই পারতেন ব্রেন্ডন ম্যাককালাম। নিউজিল্যান্ড অধিনায়ক উল্টো প্রশ্ন শুনে হাসলেন। মৃদু হাসিতেই উত্তর, ‘এবার আর ৪-০-তে হারার সম্ভাবনা নেই, সিরিজে ম্যাচই তো তিনটি!’ম্যাককালামের রসিকতা থেকে দলের হূৎস্পন্দনটা পড়ে নিতে পারেন। তাঁর বিরক্তি প্রকাশে বা বাঁকা কোনো উত্তরে হয়তো বোঝা যেত, সেই ধবলধোলাই-লজ্জা চাপে রেখেছে কিউইদের। ভেতরে ভেতরে চাপ থাকুক আর না-ই থাকুক, হালকা রসিকতায় কিউই অধিনায়ক অন্তত বোঝাতে পারলেন, দলে তরতাজা বাতাস আর চনমনে একটা আবহ তিনি আনতে পেরেছেন। এই বার্তাটা অন্তত দিতে পেরেছেন, অতীত ভাবনায় তিনি কাতর নন, বরং সামনের চ্যালেঞ্জটা নিতে মুখিয়ে আছেন।এই চ্যালেঞ্জ মানে আবার ‘প্রতিশোধ’ নয়। প্রতিশোধের ডঙ্কা বাজিয়ে সিরিজের আবহে বাড়তি রং চড়াননি ম্যাককালাম। নিজেদের ওপর বাড়তি চাপের বোঝাও নেননি। তবে শুধু ওই হালকা রসিকতায়ই পাশ কাটাননি, ৪-০ প্রসঙ্গ থেকে পালিয়েও যাননি। ওই সময়ের বাস্তবতা স্বীকার করেই শোনালেন এবারের লক্ষ্য, ‘৪-০ আমরা অবশ্যই ভুলে যাইনি। সিরিজটি ছিল একদমই একতরফা, বাংলাদেশ যোগ্য দল হিসেবেই জিতেছিল। আমরা বারবার বাজে শট খেলেছি, পুরোপুরি প্রস্তুতও ছিলাম না। এ জন্যই এবার আগে থেকেই পরিকল্পনা করে অনেক ভালো প্রস্তুতি নিয়েছি। সবচেয়ে ভালো হবে অবশ্যই এবার পাশার দান উল্টে দিতে পারলে। তবে প্রতিশোধস্পৃহা আমাদের অনুপ্রেরণা নয়। অনুপ্রেরণার অভাব নেই, সিরিজ জয়ের তাড়নাটাই তো বড় প্রেরণা!’এমনিতে অনুপ্রেরণা হতে পারে নিউজিল্যান্ডের সাম্প্রতিক ওয়ানডে ফর্মও। জানুয়ারিতে দেশের মাটিতে দক্ষিণ আফ্রিকাকে হারিয়েছে তারা, মে-জুনে ইংল্যান্ডে গিয়ে হারিয়ে এসেছে ইংলিশদের। জুনের চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পর ইংল্যান্ডের কাছে হেরেছিল মাত্র ১০ রানে। বাংলাদেশে ওই ৪-০ ব্যতিক্রম। নইলে টেস্টের পারফরম্যান্স যা-ই হোক, ওয়ানডেতে নিউজিল্যান্ড সব সময়ই সমীহ জাগানো এক দল। এটা জানেন বলেই ম্যাককালামের কণ্ঠে আত্মবিশ্বাসের কমতি নেই, ‘ওয়ানডে দল হিসেবে আমরা যথেষ্ট ভালো, আমাদের হারানো সহজ হবে না। টেস্টে এই দলটি এখনো উন্নতি করছে, টেস্টের ভাষাটা বোঝার চেষ্টা করছে। কিন্তু ওয়ানডেটা কীভাবে খেলতে হয়, আমরা জানি।’যে কারণে নিউজিল্যান্ড সব সময়ই ভালো ওয়ানডে দল, সেই সব রসদ এই দলেও আছে। ম্যাককালাম-রস টেলররা নিজের দিনে একাই জেতাতে পারেন ম্যাচ। বরাবরের মতোই দলে আছে বেশ কজন পেস বোলিং অলরাউন্ডার। জিমি নিশাম, কলিন মানরো, কোরি অ্যান্ডারসনরা বল হাতে কার্যকরী, ব্যাট হাতে হয়ে উঠতে পারেন ভীষণ বিপজ্জনক। সদ্য সমাপ্ত টেস্ট সিরিজের চেয়ে আর একটা জায়গাতেও অনেকটা এগিয়ে এই ওয়ানডে দল—পেস আক্রমণ। অভিজ্ঞ কাইল মিলস আছেন দলে, ফিরেছেন মূল স্ট্রাইক বোলার টিম সাউদি। তরুণ অ্যাডাম মিলনে আর বাঁহাতি মিচেল ম্যাকক্লেনাঘানের গতিও মাথাব্যথার কারণ হতে পারে বাংলাদেশের ব্যাটসম্যানদের। সঙ্গে অলরাউন্ডারদের ধরলে মন্থর উইকেট বিবেচনায়ও পেস আক্রমণটা দুর্দান্ত।‘প্রতিশোধ-পর্বে’ এই পেস আক্রমণই হতে পারে কিউইদের মূল অস্ত্র। হ্যাঁ, প্রতিশোধই। ম্যাককালাম শব্দটি সযত্নে এড়িয়ে গেছেন। কিন্তু ধবলধোলাই হওয়ার লজ্জায় প্রলেপ দিতে পারে তো একমাত্র সেটা ফিরিয়ে দেওয়াই। মুখে না বললেও ম্যাককালামের মনে তাই ৩-০ না থেকে পারেই না!সিলেটের গোলাপগঞ্জের লক্ষ্মীপাশা ইউনিয়নের ঘোষগাঁও-নয়াটিলা গ্রামে পিটিয়ে দুটি মেছো বাঘ মেরে ফেলেছে গ্রামবাসী।গতকাল বুধবার ফাঁদ পেতে মেছো বাঘ দুটিকে আটক করে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। গোলাপগঞ্জ থানার ওসি এ কে এম ফজলুল হক জানান, মেরে ফেলা ঠিক হয়নি—এ বিষয়টি ওই গ্রামের কয়েকজন বুঝতে পেরে মেছো বাঘ দুটি নিজেদের জিম্মায় রেখে পুলিশকে জানিয়েছেন। ঘটনাটি বন বিভাগকে জানানো হয়েছে।গ্রামবাসী সূত্রে জানা গেছে, খনিটিলা এলাকায় গত প্রায় এক সপ্তাহে রাতে ১০ জন লোক হিংস্র জন্তুর কামড়ের শিকার হন। তাঁদের মধ্যে চারজনই খনিটিলা গ্রামের। হিংস্র জন্তু ধরতে দুই দিন আগে রাতে ওই এলাকায় কয়েকটি ফাঁদ পাতা হয়। গতকাল ভোরে গ্রামের বিক্ষুব্ধ কয়েকজন লোক লাঠিসোঁটা ও ধারালো অস্ত্র দিয়ে উপর্যুপুরি আঘাত করে ফাঁদে আটকে পড়া দুটো মেছো বাঘ মেরে ফেলেন।এলাকার বাসিন্দা শাহাব উদ্দিন বলেন, মেরে ফেলা মেছো বাঘ দুটি উঠতি বয়সের হবে। দেখতে চিতা বাঘের মতো হওয়ায় অনেকে বাঘ মনে করে মেরে ফেলেন। তবে মেরে ফেলা ঠিক হয়নি—এ বিষয়টি অনুধাবন করে পুলিশকে খবর দেওয়া হয়।যশোর থেকে মনিরামপুর। দূরত্ব ১৫ কিলোমিটার। গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় মনিরামপুর থানার মোড়ে মোটরসাইকেল থেকে নামতেই শোনা গেল বঙ্গবন্ধুর সাতই মার্চের ভাষণ। স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কার্যালয়ের ছাদে প্রতিবাদ সমাবেশের প্রস্তুতি চলছে। সেখানেই বাজানো হচ্ছে মাইক। মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে এ আয়োজন। সমাবেশস্থলে গুটি কয়েক মানুষ। সারা দেশে জামায়াত-শিবিরের অব্যাহত নাশকতার প্রতিবাদে এই কর্মসূচি, জানালেন মনিরামপুর উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা সংসদের কমান্ডার আলাউদ্দিন। তবে আতঙ্কের কথাও জানালেন তিনি। মাত্র এক দিন আগে গত বৃহস্পতিবার উপজেলা কৃষক লীগের সভাপতি শফি কামাল খুন হন খেদাপাড়া ইউনিয়নের গরীবপুর গ্রামে। বললেন, মনিরামপুরের ১৭টি ইউনিয়নের ১০টিতেই জামায়াতের রয়েছে একাধিপত্য।স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদের অভিযোগ, গত ২৮ ফেব্রুয়ারি দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর মামলার রায় হওয়ার পর থেকে ইউনিয়নগুলোতে নাশকতা চালিয়ে যাচ্ছে জামায়াত-শিবির। যৌথ বাহিনীর অভিযানের পর নাশকতা কমলেও অতর্কিত হামলা হচ্ছে। তাঁরা মাথায় হেলমেট ও মুখে কালো কাপড় বেঁধে তাণ্ডব চালিয়ে ত্যাগ করছে ওই এলাকা। গত ১০ মাসে উপজেলায় নিহত হয়েছেন মোট আটজন। এঁদের মধ্যে তিনজনই জামায়াত-শিবিরের হামলায় নিহত হন।জামায়াত-শিবিরের অতর্কিত হামলার শিকার হয়েছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রেজাউল হোসেন নিজেও। তিনি বলেন, ‘দেড় মাস ধরে এই থানার দায়িত্বে আছি। এই সময়ে দুই দফা হামলার শিকার হয়ে আহত হয়েছি। তবে পরিস্থিতির উন্নতি ঘটছে। সর্বশেষ খুনের ঘটনাটি খুবই আকস্মিক।’সমাবেশস্থলে কথা হয় মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক কমান্ডার এস এম আবদুর রহিমের সঙ্গে। তাঁর গ্রামের বাড়ি ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের জয়পুর গ্রামে। হরতাল ও অবরোধে উপজেলার ২০-২২টি এলাকা সবচেয়ে বিপজ্জনক হয়ে ওঠে, তার একটি এই জয়পুর। ১ মার্চের পর এমন কোনো দিন নেই যে সেখানে সহিংসতা হয়নি।রহিম নিজে হামলার শিকার হন ১৬ মার্চ রাতে। নিজ বাড়ির উঠানে অতর্কিত ১০-১২ জনের সশস্ত্র সন্ত্রাসী দল হামলা করে। কুপিয়ে জখম করে ফেলে রেখে চলে যায় তারা। অন্ধকারে কারোর মুখ দেখতে না পেলেও কণ্ঠ শুনে তিনি জামাত আলী, আনাম ও আনোয়ারকে চিনতে পারেন। তাঁরা জামায়াত-শিবিরেরকর্মী। সাত দিন সংজ্ঞাহীন ছিলেন তিনি।ওই ঘটনার পর থেকে রহিম এক দিনের জন্যও গ্রামে যেতে পারেননি। তাঁর কাছ থেকেই ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগ সভাপতি মো. আলী হোসেন ও যুবলীগ সভাপতি আবদুল মান্নানের ঠিকানা পাওয়া গেল। তাঁরাও বাড়িছাড়া। আশ্রয় নিয়েছেন মনিরামপুর উপজেলা সদরে। এঁদের মধ্যে হোসেনের বাড়িতে ভাঙচুর ও আগুন দেওয়া হয়েছে। মান্নানকে পিটিয়ে হাত ও পা ভেঙে দেওয়া হয়েছে। দুটি ঘটনাই ২২ মার্চের।জানা গেল, ২২ মার্চ ভোরে পুলিশ জয়পুরে গিয়েছিল মনিরামপুর উপজেলা জামায়াতের আমির ফজলুর রহমানকে গ্রেপ্তার করতে। পুলিশ ফজলুর রহমানের বাড়িতে হানা দিলে মসজিদের মাইকে ডাকাত পড়েছে বলে প্রচার শুরু হয়। একপর্যায়ে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীদের উসকানিতে পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে গ্রামবাসী। গুলিবিদ্ধ হয়ে ইটভাটার শ্রমিক আনিছুর রহমান (২২) নিহত হন। গুলিবিদ্ধ হন নারী-পুরুষ ও পুলিশও। মোট আহত হন ৩৫ জন। পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে আটক করে শিবিরের পাঁচ কর্মীকে। ওই ঘটনার পর যৌথ বাহিনীর অভিযান শুরুর আগ পর্যন্ত পুলিশ জয়পুরে আর ঢুকতে পারেনি।ওই দিন সকাল সাতটার দিকে চার শতাধিক জামায়াত-শিবিরের কর্মী লোহার রড, শাবল, কুড়াল ও লাঠি এবং পেট্রলভর্তি বোতল ও গান পাউডার নিয়ে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মী ও সমর্থকদের বাড়িতে হামলা চালায়। তাঁরা ৭১টি বাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাটের পর আগুন ধরিয়ে দেয়। পিটিয়ে যুবলীগের নেতা মান্নানসহ ১৫ জনকে জখম করে।তাণ্ডবে বাড়িঘরছাড়া জয়পুর ও পার্শ্ববর্তী চান্দুয়া-সমষকাটি গ্রামের মানুষের জন্য মণিরামপুরের দুর্গাপুরে আশ্রয়শিবির খোলা হয়েছিল। আলী হোসেন জানান, তিনি নিজেও সেখানে আশ্রয় নেন। সেখানে দুদিন কাটিয়ে চলে যান ঢাকায়। পরে বরিশাল ও খুলনা হয়ে ৫ ডিসেম্বর মনিরামপুর শহরে ফেরেন। বর্তমানে শহরের একটি ভাড়াবাড়িতে থাকছেন তিনি।জয়পুরের ঘটনার পর উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে পাড়িয়ালী, গোপালপুর, চালকিডাঙ্গা, বেগারীতলা ও চিনাটোলা এলাকায়। এসব এলাকায় জামায়াত-শিবিরের প্রাধান্য রয়েছে। সেখানকার আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা এখনো গা-ঢাকা দিয়ে আছেন। উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজী মাহমুদুল হাসান জানান, জামায়াত-শিবিরের হামলায় মার্চ থেকে এ পর্যন্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, কৃষক লীগের সাধারণ সম্পাদক আবুল ইসলাম, ঢাকুরিয়া ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি অসিত কুমার মজুমদার, শ্যামকুড় ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সভাপতি ইউনুস আলী, ঢাকুরিয়া বাজার বণিক সমিতির সভাপতি দিলীপ কুমার কুণ্ডুু, আওয়ামী লীগের কর্মী নাজমুল ইসলাম, সনৎ মণ্ডল, আহাদ আলীসহ দুই শতাধিক নেতা-কর্মী ও সমর্থক এবং সাধারণ মানুষ গুরুতর আহত হন।২৫ অক্টোবর সকালে শতাধিক জামায়াত-শিবিরের কর্মী হেলমেট পরে উপজেলা সদরে অতর্কিত হামলা চালিয়ে ছয়টি বাড়ি এবং ১৫-২০টি দোকান ভাঙচুর করেন। ভাঙচুর করা বাড়িগুলোর একটির মালিক আদম আলী। তিনি জানান, সেদিন উপজেলা পরিষদের কার্যালয়ের সামনে ফাটানো হয় ২৫-৩০টি ককটেল। সোনালী ব্যাংকের কার্যালয়ের সামনেও একটি ককটেল ফাটানো হয়।১৮ দলের অবরোধ চলাকালে গত ৩০ নভেম্বর চালকিডাঙ্গায় যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসনের সরকারদলীয় সাংসদ খান টিপু সুলতানও হামলার শিকার হন। ওই দিন যশোর-সাতক্ষীরা সড়কের ওপর অবরোধকারীদের ফেলে রাখা গাছের গুঁড়ি ও বিদ্যুতের খুঁটি সরানোর সময় জামায়াত-শিবিরের হামলায় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শরীফ নজরুল ইসলাম, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মীর রেজাউল হোসেনসহ ২০ জন আহত হন। হামলা থেকে কোনো রকমে রক্ষা পান খান টিপু সুলতান।দুটি উপদলে বিভক্ত উপজেলা আওয়ামী লীগের একটি ধারার নেতৃত্বে সাংসদ খান টিপু সুলতান। অন্য ধারাটি চলছে সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান স্বপন ভট্টাচার্যের নেতৃত্বে। দুজনই দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন। আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন পেয়েছেন টিপু সুলতান। স্বপন ভট্টাচার্য স্বতন্ত্র প্রার্থী। গতকাল উপজেলা সদরে স্বপন ভট্টাচার্যের দেখা মিললেও টিপু সুলতান ছিলেন শহরের বাইরে মর্শিমনগর ও হরিহরনগর ইউনিয়নে। জানা গেছে, মনিরামপুর পৌরসভা ও চারটি ইউনিয়নের মধ্যেই নির্বাচনী প্রচারণা আটকে আছে। উপজেলার ১৭টি ইউনিয়ন পরিষদে বিএনপি-জামায়াতের সমর্থিত ১৪ জন, আওয়ামী লীগের তিনজন চেয়ারম্যান রয়েছেন। মনিরামপুর পৌরসভার মেয়রও বিএনপি-সমর্থিত।খান টিপু সুলতানের নির্বাচনী প্রচারণা চালাতে গিয়েই বৃহস্পতিবার খুন হন কৃষক লীগের নেতা শফি কামাল। গতকাল মনিরামপুর শহরের দোলখোলা মোড়ে শফি কামালের বাড়িতে কথা হয় শোকসন্তপ্ত পরিবারের সঙ্গে। তাঁর বড় ছেলে হারুন অর রশীদ জানান, ‘বাবা আমাদের গ্রামের বাড়ি খেদাপাড়ার গরীবপুরে গিয়েছিলেন নির্বাচনী পোস্টার লাগানোর কাজ তত্ত্বাবধান করতে। বিএনপি-জামায়াতের লোকজন বাধা দেওয়ায় তিনি পোস্টার লাগানো বন্ধ রেখে বাড়ির পাশের মসজিদে নামাজ পড়তে যান। নামাজ পড়ে বের হওয়ার পর মসজিদের পাশে হাঁসুলি দিয়ে কুপিয়ে খুন করা হয় তাঁকে।’ এ ঘটনায় হারুন ২৬ জনের নামে একটি মামলা করেছেন।সহিংসতার বিষয়ে জানতে উপজেলার জামায়াত-শিবিরের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতার সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।
ভাওয়াইয়া গানের সংগঠন ভাওয়াইয়া অঙ্গন, ঢাকার উদ্যোগে আজ শনিবার বিকেল পাঁচটায় রাজধানীর ২২ তোপখানা রোডে বাংলাদেশ শিশুকল্যাণ পরিষদ মিলনায়তনে এক সভা অনুষ্ঠিত হবে। ভাওয়াইয়া ভবন নির্মাণ বাস্তবায়ন পরিষদ গঠনের লক্ষ্যে অনুষ্ঠেয় এ সভায় ভাওয়াইয়াপ্রেমী লোকজনকে উপস্থিত থাকতে সংগঠনের পক্ষ থেকে অনুরোধ করা হয়েছে। সভা শেষে ভাওয়াইয়া গানের আসর বসবে। বিজ্ঞপ্তি।আতঙ্ক, উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা আর ধরপাকড়ের মধ্য দিয়ে গতকাল সোমবার যশোরে দ্বিতীয় দিনের হরতাল পালিত হয়েছে। প্রথম দিনের হরতালে যশোরে খুনসহ ব্যাপক বোমাবাজির ঘটনা ঘটায় সাধারণ মানুষ আতঙ্কে ছিল। এ কারণে হরতাল-সমর্থকেরা রাস্তায় না থাকলেও মানুষ ঘর ছেড়ে বের হতে সাহস দেখায়নি। গতকাল দুপুরে শহর ঘুরে কোথাও হরতাল-সমর্থকদের রাস্তায় দেখা যায়নি। তবে হরতালবিরোধীদের উপস্থিতি ছিল। শহরের বেশির ভাগ দোকানপাট বন্ধ ছিল। দূরপাল্লার কোনো যানবাহন চলাচল করেনি। শহরের ভেতরেও ভ্যান, রিকশা, ইজিবাইকও তেমন একটা চোখে পড়েনি। রাস্তায় মানুষের উপস্থিতি অনেক কম ছিল। যানবাহন না থাকায় অনেকে কর্মস্থলে যেতে পারেননি। অন্যান্য দিনের হরতালে শহরে অনেকটা স্বাভাবিক পরিবেশ থাকলেও গতকাল ছিল ভিন্ন চিত্র। এর কারণ হিসেবে জানা গেছে, প্রথম দিনের হরতালে নওয়াপাড়ায় প্রতিপক্ষের হাতে খুন হন যুবলীগের নেতা আলমগীর হোসেন ওরফে শিমুল। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শাহিন চাকলদারকে লক্ষ্য করে বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এরপর শহরের দড়াটানায় প্রকাশ্যে মুহুর্মুহু বোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। বিকেলে আওয়ামী লীগ হরতালবিরোধী মিছিল বের করে। মিছিল শেষে দড়াটানা মোড়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশে শাহিন চাকলাদার আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উদ্দেশে বলেন, ‘কাল থেকে আপনাদের মাঠে থাকার দরকার নেই। আমরা যশোরের রাজপথ সামাল দেব।’ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ সাবেরুল হক গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা ইচ্ছে করেই একটু পিছিয়েছি। কারণ, আওয়ামী লীগ ছিল মারমুখী। সংঘাত এড়াতে আমরা ছোট একটি মিছিল করে রাজপথ ছেড়ে দিয়েছি।’ সামাজিক সংগঠন জনউদ্যোগের আহ্বায়ক এম আর খায়রুল ইমাম বলেন, যশোর শহরে এখন বোমা-গুলি খুবই সাধারণ বিষয় হয়ে গেছে। রাস্তায় মানুষের নিরাপত্তা নেই। সহিংসতার মধ্যে সাধারণত মানুষ যেতে চায় না। হরতাল-সমর্থক আর বিরোধীদের চাপে মানুষ দিশেহারা।দুই কামরার ছোট্ট ঘরটাতে খুশির রোশনাই। পরিবারের সদস্যরা বেশ উৎফুল্ল। কিছুক্ষণ পর পর লাইট, ক্যামেরা, অ্যাকশন। নিম্নবিত্ত এই পরিবারটির জন্য একেবারেই নতুন এক অভিজ্ঞতা। আশপাশের বাসার ছেলেমেয়েদেরও যেন আনন্দের শেষ নেই। ক্যামেরা যেখানে, তারাও সেখানে। ক্যামেরার পাশ ছাড়ছে না কেউ। পাড়ার লোকজনও এ নিয়ে বেশ কৌতূহলী। সবার মুখে মুখে ফিরছে ঘটনাটা। দোকানের সামনের জটলায়ও আলোচনার বিষয় এটি।এত কিছুর উপলক্ষ ক্রিকেটার মোহাম্মদ শরীফ। চলছিল বাংলাদেশ টেলিভিশনের জনপ্রিয় ম্যাগাজিন অনুষ্ঠান ‘ইত্যাদি’র শুটিং। একহাতি ও পা-হীন এই ক্রিকেটারকে এবার দেখা যাবে এই ম্যাগাজিন অনুষ্ঠানে। ২০ নভেম্বর চট্টগ্রামের মাদারবাড়ির কামালগেট এলাকায় ধারণ করা হয় শরীফের নিত্যদিনের চিত্র। বিটিভি ও বিটিভি ওয়ার্ল্ডে ইত্যাদির এবারের পর্ব প্রচারিত হবে আগামীকাল শুক্রবার রাত আটটার বাংলা সংবাদের পর। অনুষ্ঠানটি পুনঃপ্রচারিত হবে ১ ডিসেম্বর রাত সাড়ে ১০টায়।মনে আছে পাঠক, ১৬ বছরের অদম্য কিশোর শরীফের কথা? ১১ বছর বয়সে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে এক হাত ও দুই পা হারানো এ কিশোর সব বাধা তুচ্ছ করে গেয়েছে জীবনের জয়গান। তার মনের জোরের কাছে পরাস্ত হয়েছে শারীরিক বাধা। সে এখন পাড়ার নামী ক্রিকেটার। শুধু তা-ই নয়, তার রয়েছে আটজনের একটি ক্রিকেট দল। যে দলের অধিনায়ক সে নিজে। শর্টপিচ ক্রিকেটে তার দল ইতিমধ্যে জিতেছে চারটি টুর্নামেন্ট।অথচ শরীফকে নিয়ে বাবা-মায়ের দুশ্চিন্তার শেষ ছিল না। সেই ছেলেই তাঁদের চিনিয়েছে মুদ্রার ওপিঠ, যেখানে শুধুই সাফল্যগাথার কাহিনি। শরীফের মা বেবী খাতুন দুই হাত তুলে দোয়া করছেন ছেলের জন্য। বাবা সবজি বিক্রেতা মোহাম্মদ আলমও ছেলের সাফল্যে খুশিতে আটখানা।আর শরীফ? সেই মুচকি হাসি লেগেই আছে মুখে। তোমাকে নিয়ে এত মাতমাতি কেমন লাগছে? বলল, ‘সবাই এত ভালোবাসা দিচ্ছে, আমার আত্মবিশ্বাস আরও বেড়ে যাচ্ছে। সবাই আমার জন্য দোয়া করবেন।’‘ইত্যাদি’র সহকারী পরিচালক মোহম্মদ মামুন বলেন, ‘ব্যতিক্রমী যেকোনো কিছু দেখলেই ‘ইত্যাদি’র দল সেখানে ছুটে যায়। তাই শরীফের খবর পেয়ে আমরা এসেছি।’উল্লেখ্য, শরীফকে নিয়ে প্রথম আলোর শনিবারের ক্রোড়পত্র ছুটির দিনে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় গত ২৬ অক্টোবর। মূল রচনায় উঠে আসে এই কিশোরের আদ্যোপান্ত। এরপর ইত্যাদির অনুষ্ঠানে ডাক পড়ে তার।বাঁশখালী সদর থেকে দক্ষিণে পুইছড়ির টইটং পর্যন্ত এলাকাকে ‘পাকিস্তান’ বলছেন স্থানীয় লোকজন। ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন, ওই এলাকায় প্রশাসনের কোনো নিয়ন্ত্রণ নেই কিংবা নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টাও করা হয় না।দক্ষিণ চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলায় বিভিন্ন স্তরের লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সারা দেশে ২৮ ফেব্রুয়ারি থেকে সহিংসতা শুরু হয়। কিন্তু দক্ষিণ বাঁশখালীতে সহিংসতা শুরু হয় এক মাস আগে, ২৮ জানুয়ারি। ওই দিন বাঁশখালীর চাম্বল বাজারে দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদীর ব্যানার নামানোর ঘটনার জের ধরে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের কর্মীদের তুমুল সংঘর্ষ হয়। একপর্যায়ে পুলিশকে পিছু হটতে হয়। বাঁশখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. কামরুল হাসান এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দক্ষিণ চট্টগ্রামে জামায়াত-শিবিরের দাপট বেশি। সহিংসতার সময়ে আমাদেরও সেখানে যেতে ভয় লাগে।’ওই এলাকার একাধিক ভুক্তভোগী নাম প্রকাশ না করে বলেন, দক্ষিণ বাঁশখালীতে জামায়াত-শিবিরের আদেশ-নির্দেশেই এখন সব কিছু চলে। প্রতিবাদ করলে প্রাণ যাওয়ার আশঙ্কা। তাই জামায়াতের কথায় চলতে হচ্ছে।আরেক ভুক্তভোগী বলেন, ‘বাঁশখালী স্পর্শকাতর এলাকা। পাকিস্তানি ভাবধারার লোকজনের দাপট এখানে বেশি। মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে জামায়াতের শীর্ষ নেতাদের মামলার রায় ঘোষণা করার আগে কিংবা রায় কার্যকর করার আগে থেকেই বাঁশখালীতে নিরাপত্তা জোরদার করা অপরিহার্য। তাঁর প্রশ্ন, স্থানীয় প্রশাসনের কর্মকর্তারা কি সেই তাগিদ অনুভব করেন? ১২ ডিসেম্বর কাদের মোল্লার রায় ফাঁসি কার্যকরের দিন কেন আগে থেকে বাড়তি নিরাপত্তাব্যবস্থা নেওয়া হয়নি? কেন বিজিবি চায়নি স্থানীয় প্রশাসন’—প্রশ্ন ওই ভুক্তভোগীর। সমুদ্র উপকূলবর্তী আনোয়ারা ও বাঁশখালী উপজেলাকে বিভক্ত করেছে সাঙ্গু নদ। নদের উত্তরাংশ আনোয়ারা শান্ত। গত বুধবার এই পথে যেতে দেখা যায়, সেখানে চাষিরা জমিতে কাজ করছেন। সাঙ্গুর ওপর নির্মিত চাঁদপুর-তৈলারদ্বীপ সেতু পেরিয়ে নদের দক্ষিণ পাশে বাঁশখালী সীমানায় পৌঁছার পরই পথে পথে দেখা গেছে নাশকতার নানা চিহ্ন।চট্টগ্রামের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইলতুৎ মিশ বলেন, ‘বাঁশখালীতে জামায়াত-শিবিরের নেতা-কর্মীরা সব কটি সহিংস ঘটনায় জড়িত। ফেব্রুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত তাঁরা ১০-১২ কোটি টাকার সম্পদ ধ্বংস করেছেন বলে আমাদের ধারণা। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে।’তবে স্থানীয় লোকজনের দাবি, এই ক্ষয়ক্ষতি ১৫ কোটি টাকার বেশি। ধ্বংসযজ্ঞ থামানোর জন্য স্থানীয় প্রশাসনের কোনো প্রস্তুতি ছিল না বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ।এর মধ্যে সবচেয়ে বড় নাশকতা হয়েছে ২৮ ফেব্রুয়ারি। ওই দিন বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়, উপজেলা বিচারিক হাকিম আদালত ও দেওয়ানি আদালতে অগ্নিসংযোগ এবং আরও কয়েক শ দোকানপাট ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। ১৯৮৪ সালে প্রতিষ্ঠিত ফৌজদারি ও দেওয়ানি উভয় আদালতের চার হাজার ৮০০ মামলা এবং আদালতের সংরক্ষিত বিভিন্ন নথিপত্র, হাজতখানা, বিচারিক হাকিম ও সহকারী জজের দুই কক্ষসহ আদালত ভবনের বিভিন্ন স্থাপনা পুড়িয়ে দেওয়া হয়। এর জন্য মামলার বাদী-বিবাদী ও আইনজীবীরা চরম বিপাকে পড়েছেন। স্থবিরতা নেমে এসেছে আদালতের কার্যক্রমে।বাঁশখালী আইনজীবী সমিতির সাবেক সভাপতি দিলীপ দাশ বলেন, ধ্বংসযজ্ঞের পর দুই মাস ফৌজদারি এবং ছয় মাস দেওয়ানি মামলার কার্যক্রম বন্ধ ছিল। বিচার কার্যক্রম পিছিয়ে যাওয়ায় বাদী ও বিবাদী উভয় পক্ষের খরচ ও কষ্ট বেড়েছে। মূল্যবান নথি পুড়ে যাওয়ায় অনেকে ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। চাঁদপুর-তেলাদ্বীপ সেতু পেরিয়ে মোটরসাইকেলে সাধনপুর দিয়ে উপজেলা সদরের দিকে যাচ্ছিলাম। শিশিরভেজা পিচঢালা পথের দুই পাশে কেবল ধ্বংসযজ্ঞের চিহ্ন। ‘ডিজেলকরাত’ দিয়ে সড়কের দুই পাশে গাছগুলো কেটে সাবাড় করে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এই গাছ ফেলেই চট্টগ্রামের সঙ্গে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের আগমন ঠেকাতে দুর্বৃত্তরা এমন কাণ্ড ঘটায় বলে স্থানীয় লোকজন জানান।সাধনপুর থেকে দক্ষিণে পুইছড়ি পর্যন্ত ১২ ডিসেম্বর রাতে অর্ধশতাধিক গাছ কেটে রাস্তা অবরোধ করে জামায়াত-শিবির। এরপর বিভিন্ন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনায় আগুন ও হামলা চালানো হয়। সড়কের পাশে গাছ কারা কেটেছে জিজ্ঞেস করতেই পুইছড়ির একজন ইউপি সদস্য প্রথমে এদিক-ওদিক তাকান। চাপা কণ্ঠে বলেন, সড়কের পশ্চিম দিকের অংশ শেখেরখীল ও পূর্ব দিকে পুইছড়ি ইউনিয়ন। উপজেলা জামায়াতের আমির জহিরুল ইসলামের বাড়ি শেখেরখীল এলাকায়। সেখানে জামায়াত-শিবিরের একচ্ছত্র আধিপত্য। তাঁর দাবি, জহিরুলের কথায় দক্ষিণ বাঁশখালী নিয়ন্ত্রিত হয়। তাঁর দলের কিশোর-যুবকেরা রাস্তার দুই পাশে গাছ কেটে প্রকৃতি ধ্বংস করেছে। তারা তিনটি বেইলি সেতুর পাটাতনও খুলে নিয়েছিল।চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার এ কে এম হাফিজ আক্তার এ প্রসঙ্গে বলেন, ‘দক্ষিণ চট্টগ্রামের মধ্যে বাঁশখালী, সাতকানিয়া আর লোহাগাড়া উপজেলা সহিংসতাপ্রবণ এলাকা। আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে রাখতে বাঁশখালীর স্থানীয় প্রশাসনকে কর্মপন্থা ঠিক করতে হবে।’তবে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সাব্বির ইকবাল দাবি করেছেন, বাঁশখালীর আইনশৃঙ্খলা ভালো আছে।সহিংসতার বিষয়ে জানতে চাইলে বাঁশখালী উপজেলা জামায়াতের আমির মো. জহিরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘কিছু লোক গ্রেপ্তার ও হয়রানির শিকার হওয়ায় উত্তেজিত লোকজন গাছ কেটে আর সেতুর পাতাটন খুলে প্রতিবাদ করেছে। এদের কেউ আমাদের দলের হলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেব।’দক্ষিণ বাঁশখালীকে ‘পাকিস্তান’ বলার কারণ কী—জানতে চাইলে জহিরুল ইসলাম বলেন, ‘আমরা স্বাধীন বাংলাদেশের নাগরিক। পাকিস্তানে জঙ্গিবাদ মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। আমরা ইসলামপ্রিয় ও শান্তিপ্রিয় বাঙালি। পাকিস্তানের জঙ্গিবাদকে আমরা ঘৃণা করি।’
অপহরণের প্রায় আড়াই মাস পর গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার মাওনা ইউনিয়নের এক কলেজছাত্রীকে উদ্ধার করেছে পুলিশ। গতকাল শুক্রবার বিকেলে ঢাকার কদমতলী থানার পাশ থেকে ছাত্রীকে উদ্ধার করে তিন অপহরণকারীকে গ্রেপ্তার করা হয়।অপহরণের ঘটনায় ওই ছাত্রীর বড় ভাই সাতজনের বিরুদ্ধে শ্রীপুর মডেল থানায় মামলা করেছিলেন।এজাহারে বলা হয়েছে, গত ৯ জুলাই বিকেলে ওই ছাত্রী বাড়ির বাইরে বের হলে মাওনার দক্ষিণ বারতোপা এলাকার নাজমুল ও তার আট-দশজন সহযোগী অস্ত্র দেখিয়ে ও মুখ বেঁধে মাইক্রোবাসে ওঠায়। এ সময় ছাত্রীর চিৎকারে তার মা এগিয়ে এলে অপহরণকারীরা মাইক্রোবাস নিয়ে চলে যায়।শ্রীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আমির হোসেন জানান, কদমতলী থানার পুলিশের সহায়তায় শ্রীপুর থানার পুলিশ গতকাল বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ওই ছাত্রীকে উদ্ধার করে। সেই সঙ্গে অপহরণকারী নাজমুল, তার দুই সহযোগী ইন্দ্রবপুর গ্রামের আলম ও ইমাম উদ্দিনকে গ্রেপ্তার করে শ্রীপুর থানায় নিয়ে আসে।কয়েক দিনের বৃষ্টিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার চরাঞ্চলে রবিশস্যের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। বিশেষ করে রোপণ করা মূলকাটা পেঁয়াজের বীজ পচে যাওয়ায় কৃষকেরা বিপাকে পড়েছেন।উপজেলার উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা মুঞ্জুরুল আলম বলেন, ১৫ অক্টোবর থেকে ১৫ নভেম্বরের মধ্যে পেঁয়াজ, রসুন, মসুর, সরিষাসহ রবি ফসল বপনের উপযুক্ত সময়। কিন্তু বৃষ্টির কারণে এবার সেই সময় পার হয়ে যাচ্ছে। এ বছর যথাসময়ে রবি ফসল কৃষকের ঘরে উঠবে কি না, তা নিয়ে যথেষ্ট সংশয় আছে। এ ছাড়া যেসব কৃষক মূলকাটা পেঁয়াজবীজ আগে রোপণ করেছেন, বৃষ্টির কারণে তাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন।উপজেলার উজানচর ইউনিয়নের পূর্ব উজানচর হাবিল মণ্ডলপাড়ার কৃষক তোফাজ্জেল হোসেন জানান, ঈদের আগে পেঁয়াজবীজ, সার, কীটনাশক, শ্রমিকসহ প্রায় ৪০ হাজার টাকা খরচ করে এক বিঘা জমিতে মূলকাটা পেঁয়াজবীজ রোপণ করেন। এক সপ্তাহ পর থেকে চারাগাছ গজাতেও থাকে। কিন্তু ঈদের পর টানা বৃষ্টিতে জমিতে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হওয়ায় বীজ পচে নষ্ট হয়ে গেছে। এখন রোপণের জন্য নতুন করে জমি চাষ করছেন।উজানচর বকারটিলা গ্রামের ইউনুছ মিয়া বলেন, ঈদের এক দিন পর ১৬ শতাংশ জমিতে প্রায় ১৫ হাজার টাকা খরচ করে পেঁয়াজ রোপণ করেন। এর দু-তিন দিন পর থেকে টানা বৃষ্টির কারণে পানি আটকে সম্পূর্ণ খেত নষ্ট হয়ে গেছে। এদিকে রবি ফসল আবাদের সময় প্রায় শেষ। সময়মতো বীজ বপন করতে না পারায় ভালো ফলন ঘরে তোলা নিয়ে সংশয় দেখা দিয়েছে।উপজেলা কৃষি কার্যালয় সূত্র জানায়, গোয়ালন্দে মূলকাটা পেঁয়াজবীজ রোপণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল তিন হাজার হেক্টর। ইতিমধ্যে ৮৩ হেক্টরে রোপণ হয়েছে। কয়েক দিনের টানা বৃষ্টিতে প্রায় ১৫ হেক্টর জমির পেঁয়াজবীজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। উজানচর ও দৌলতদিয়া ইউনিয়নে ক্ষতির পরিমাণ বেশি। এ ছাড়া সরিষা ও মসুর আবাদের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে যথাক্রমে এক হাজার ও ৫৫০ হেক্টর।বিশিষ্ট আইনজীবী ও গণফোরামের সভাপতি ড. কামাল হোসেন বলেছেন, ‘প্রধানমন্ত্রী চাইলে এক মিনিটেই সংকটের সমাধান হতে পারে। তিনি যদি বলেন, আমি আম্পায়ার হতে চাই না, সরে দাঁড়াচ্ছি। তাতেই সমাধান হয়ে যাবে।’ তিনি মনে করেন, প্রধানমন্ত্রীকে এখন পদত্যাগের কথা বিবেচনা করা উচিত।গতকাল বুধবার বিকেলে রাজধানীর বেইলি রোডে নিজ বাড়ির সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে কামাল হোসেন এসব কথা বলেন। সরকার ও প্রধান বিরোধী দলকে নেতিবাচক আচরণ পরিহার করে জনগণের কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করার দাবিতে এ সংবাদ সম্মেলন করা হয়।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে উদ্দেশ করে ড. কামাল হোসেন বলেন, ‘জনগণ উনাকে ক্ষমতা দিয়েছে, ১০ বছর প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, ক্ষমতা ভোগ করেছেন। এখন একটা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে, এখন তাঁর পদত্যাগের কথা বিবেচনা করা উচিত।’ তিনি বলেন, সুস্থ ধারার গণতান্ত্রিক রাজনীতি অব্যাহত রাখতে হলে অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন এবং শান্তিপূর্ণভাবে ক্ষমতা হস্তান্তরের কোনো বিকল্প নেই।গণফোরামের সভাপতি বলেন, দলীয় সরকারের অধীন নির্বাচন জনগণকে খাওয়ানো যাবে না। তিনি ২০০৮ সালের মতো নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘আদালত আরও দুই টার্ম তত্ত্বাবধায়ক সরকার রাখার পক্ষে মত দিয়েছিল। কোর্ট উনাকে বাধ্য করেনি সংবিধানের এ সংশোধনী করার জন্য।’ড. কামাল আওয়ামী লীগের প্রতি ইঙ্গিত করে বলেন, যারা ২০০৭ সালের সাজানো নির্বাচনের বিরুদ্ধে আন্দোলন করে ক্ষমতায় এসেছে, তাদের তো ২০০৮ সালের নির্বাচনের বিরুদ্ধে যাওয়া শোভা পায় না। তিনি বলেন, ‘২০০৭ সালের মতো কোনো দলীয় ব্যক্তি, নির্বাচন কমিশনার ও প্রশাসনের অধীন সাজানো নির্বাচন চাই না। ২০০৮ সালের মতো নিরপেক্ষ নির্বাচন চাই। সে ধরনের সরকার, নির্বাচন কমিশন ও প্রশাসন চাই।’সংকটের সমাধান না হলে এবং সহিংসতা চলতে থাকলে তৃতীয় কোনো পক্ষের ক্ষমতা গ্রহণের আশঙ্কা আছে কি না, এ প্রশ্নের জবাবে কামাল হোসেন বলেন, ‘বিভিন্ন রকমের আশঙ্কা থাকে। তবে আমরা সুষ্ঠু নির্বাচনের আন্দোলনে আছি, এর মধ্যেই থাকব।’ তিনি বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার ও নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষ ভূমিকা ছাড়া এবং সবার কাছে গ্রহণযোগ্য নির্বাচনী আইন, আচরণবিধি, জামানত ও নির্বাচনী ব্যয়সহ সামগ্রিকভাবে ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ সুনিশ্চিত করা ছাড়া নিরপেক্ষ নির্বাচন সম্ভব নয়।সংবাদ সম্মেলনে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসীন মন্টু, কেন্দ্রীয় নেতা সুব্রত চৌধুরী, মফিদুল ইসলাম খান কামাল, শফিক উল্লাহ, সাঈদুর রহমান প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।আবাসিক এলাকা থেকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান সরিয়ে নেওয়ার দাবিতে গতকাল শনিবার বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়সংলগ্ন ও আর নিজাম রোড আবাসিকের প্রধান সড়কের প্রবেশমুখে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতি এর আয়োজন করে। এতে এলাকার ভবন মালিকদের তাঁদের ভাড়া দেওয়া বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী এক মাসের মধ্যে স্বেচ্ছায় অপসারণের অনুরোধ জানানো হয়।প্রথম আলোতে গতকাল এ বিষয়ে প্রতিবেদন ছাপা হওয়ার পরে তাঁরা এ মানববন্ধনের আয়োজন করেন বলে জানা গেছে।মানববন্ধনে শিশু-কিশোর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী নারী-পুরুষ অংশ নেন। এতে এলাকাবাসীর পক্ষে বক্তব্য দেন বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ইমরান বিন ইউনূস, শিক্ষাবিদ হাসিনা জাকারিয়া, ওয়ার্ড কাউন্সিলর গিয়াস উদ্দিন, ও আর নিজাম রোড আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আলম প্রমুখ।বক্তারা বলেন, ঐতিহ্যবাহী এ আবাসিক এলাকায় বর্তমানে স্কুল, কলেজ, কোচিং সেন্টার, ক্লাব, বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, আবাসিক হোটেল, হাসপাতাল, ক্লিনিক ও ফুটপাত দখল করে ভাড়া দেওয়ার কারণে এলাকার সুনাম হারাতে বসেছে। বাড়ছে যানজট, শব্দ দূষণ, ইভ টিজিং ও ছিনতাইয়ের মাত্রা।বিশেষজ্ঞ চিকিত্সক ইমরান বিন ইউনূস বলেন, ‘আমরা নাগরিক অধিকার হারাতে বসেছি। কোনো আবাসিক এলাকা এ রকম হতে পারে না। আমি বাসা থেকে মূল সড়কে আসতে আগে যেখানে ১০ মিনিট সময় লাগত, এখন সেখানে ৪৫ মিনিট লাগছে। কারণ, ভাড়া দেওয়া প্রতিষ্ঠানগুলোতে আসা যানবাহনের এলোপাতাড়ি অবস্থান।’ও আর নিজাম রোড আবাসিক এলাকা কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক মো. নুরুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা কেউ কারও প্রতিপক্ষ নই। আমরা একে অন্যের প্রতিবেশী। সেই বোধ থেকে সবার স্বার্থে এলাকার সুস্থ পরিবেশ বজায় রাখার জন্য ভাড়া দেওয়া বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো আগামী এক মাসের মধ্যে স্বেচ্ছায় সরিয়ে ফেলার জন্য অনুরোধ জানিয়েছি ভবন মালিকদের।’ চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (সিডিএ), পুলিশ প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট সবাইকে এর আগে এ বিষয়ে অবহিত করার কথাও জানান।
সন্ত্রাসী হামলায় গত বৃহস্পতিবার দুপুরে ফরিদপুরের চরভদ্রাসন উপজেলা সদর ইউনিয়নের ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান খান (৪০) আহত হয়েছেন। তাঁকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে। স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, প্রায় ১০-১২ জন সন্ত্রাসীর একটি দল ইউনুস মোল্লা (৫৫) নামের এক স্থানীয় বাসিন্দাকে ধরে নিয়ে উপজেলা টেলিফোন এক্সচেঞ্জের একটি কক্ষে আটকে রাখে। খবর পেয়ে ইউপি সদস্য ফজলুর রহমান তাঁকে উদ্ধার করতে গিয়ে সন্ত্রাসীদের হামলার শিকার হন। চরভদ্রাসন থানার উপপরিদর্শক (এসআই) সামসুজ্জামান বলেন, এ ঘটনায় একটি মামলা হয়েছে। ফরিদপুর অফিস।টানা হরতালের কারণে যশোরে সবজির বৃহৎ পাইকারি মোকাম বারীনগর থেকে সবজি ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো যাচ্ছে না। যশোরের বাইরে পাঠাতে না পারায় বেশির ভাগ কৃষক খেত থেকে সবজি তুলছেন না। ফলে স্থানীয় খুচরা বাজারেও সবজির সংকট দেখা দিয়েছে। প্রতি কেজি সবজিতে দাম আট থেকে দশ টাকা বেড়েছে।মোকামের ব্যবসায়ীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হরতালের কারণে মোকামে সবজি উঠেছে অনেক কম। ফলে ৩০ থেকে ৩৫ টাকা কেজি দরে শিম, বেগুন ও মুলা পাইকারি বেচাকেনা হচ্ছে। হরতালের প্রথম দিনে এ বাজারে আট থেকে দশ টাকা কেজি দরে শিম, বেগুন ও মুলা কেনাবেচা হয়েছে। তিন গুণ বেশি ভাড়া দিয়ে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে পাঁচ ট্রাক সবজি রোববার রাতে ঢাকায় পাঠাতে পেরেছেন ব্যবসায়ীরা। কৃষকদের সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে এসব সবজি ব্যবসায়ীরা কিনে নিয়েছেন।বারীনগর হাটের ইজারাদার ফরিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, এক দিন পর পর এ মোকাম থেকে অন্তত ৪০ ট্রাক করে সবজি ঢাকা, চট্টগ্রাম, সিলেট, মাদারীপুর, শরীয়তপুর, ভোলাসহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় পাঠানো হয়। হরতালের প্রথম দিনে অনেক কৃষকের সবজিবোঝাই ভ্যান হরতাল সমর্থকেরা ফিরিয়ে দিয়েছেন। এ কারণে হরতালের দ্বিতীয় দিনে কৃষকেরা খেত থেকে সবজি তোলার ঝুঁকি নেননি। এ অবস্থায় মোকামে সবজির সরবরাহ কমে গেছে; বেড়ে গেছে দাম। তিনি জানান, এই সবজির হাট সব সময় হরতালের আওতামুক্ত থাকে। কিন্তু এবার অবস্থা উল্টো।যশোরের বিভিন্ন খুচরা কাঁচাবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সব ধরনের সবজির দাম কেজিতে আট থেকে দশ টাকা বেড়েছে। খুচরা ব্যবসায়ীরা বলছেন, বাজারে সবজির আশানুরূপ সরবরাহ নেই। ফলে বেশি দামে সবজি কিনতে হচ্ছে।কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগ যশোরের উপপরিচালক হেমায়েত হোসেন বলেন, যশোর থেকে প্রতিবছর দেশের বিভিন্ন এলাকায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন সবজি সরবরাহ করা হয়।ময়মনসিংহের গৌরীপুর উপজেলায় রবিন মিয়া (৩০) নামের এক যুবককে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করেছে একদল দুর্বৃত্ত।নিহত রবিন মিয়া নেত্রকোনা জেলার কেন্দুয়া উপজেলার দলপা গ্রামের ফারাস উদ্দিনের ছেলে।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রের বিবরণ অনুযায়ী, রবিন গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নিজের বাড়ি থেকে মোটরসাইকেলে চেপে গৌরীপুর উপজেলার শাহগঞ্জর বাজারে আসেন। রাত আটটার দিকে বাড়ি ফেরার সময় বীর আহমঞ্চদপুর গ্রামের কুখুয়াখালী সেতুর কাছে তাঁর পথ রোধ করে দুর্বৃত্তরা। তারা রবিনের গায়ে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন টের পেয়ে রবিনকে উদ্ধার করে ময়মনসংিহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতলে নিয়ে যায়।পরে অবস্থার অবনতি হলে ওই রাতেই তাঁকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় গতকাল বুধবার ভোর পৌনে পাঁচটায় রবিনের মৃত্যু হয়।গৌরীপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হামিদুল ইসলাম গতকাল বিকেলে জানান, পূর্ব শুত্রুতার জের ধরে এ হত্যাকাণ্ড ঘটতে পারে। মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির নির্বাচন আগামী ২৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে।এতে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের দায়িত্ব পালন করবেন বিশ্ববিদ্যালয়ের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ভারপ্রাপ্ত) অধ্যাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন।নির্বাচনে প্রতিবারের মতো আওয়ামী ও বাম সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন হলুদ দল এবং বিএনপি ও জামায়াত সমর্থিত শিক্ষকদের সংগঠন সাদা দলের অংশগ্রহণের কথা রয়েছে।অধ্যাপক মোহাম্মদ মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি আজ (শনিবার) এ বিষয়ে একটি চিঠি পেয়েছি।গত বৃহস্পতিবার শিক্ষক সমিতির এক সভায় নির্বাচনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়। আমি কয়েক দিনের মধ্যে সভা ডেকে পরবর্তী করণীয় নির্ধারণ করব।’
একসময় মাঠের মতো বিজ্ঞাপন-বাণিজ্যেও শচীন টেন্ডুলকারের ছিল একচ্ছত্র আধিপত্য। বেশ কিছুদিনই তাঁকে হটিয়ে এ ক্ষেত্রে এক নম্বর মহেন্দ্র সিং ধোনি। বিভিন্ন পণ্যের দূতিয়ালির সুবাদে ক্রিকেটারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি আয় এখন ভারতের অধিনায়কেরই। তবে শিগগিরই রাজত্ব হারাতে যাচ্ছেন ধোনি। টেন্ডুলকার-ধোনিকে টপকে বিজ্ঞাপনরাজ্যের নতুন ‘ডন’ বনে যাচ্ছেন বিরাট কোহলি! ভারতীয় গণমাধ্যমের দাবি অন্তত সে রকমই। সম্প্রতি বড় দুটি চুক্তিই কোহলিকে শীর্ষে তুলে দিচ্ছে।মাঠের ২২ গজে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তারুণ্য, আকর্ষণীয় চেহারা এবং দেহভঙ্গির কারণে মাঠের বাইরেও কোহলি ‘সুপারহিট’। বিভিন্ন কোম্পানিও তাই টাকার বস্তা নিয়ে ছুটছে তাঁর পেছনে। ভারতের শীর্ষস্থানীয় এক পত্রিকার খবর, জার্মানির বিশ্বখ্যাত ক্রীড়াসামগ্রী প্রস্তুতকারক প্রতিষ্ঠান অ্যাডিডাসের সঙ্গে তিন বছরের চুক্তি করেছেন কোহলি। এ থেকে কোহলির বছরে আয় হবে ১০ কোটি রুপি! বিজ্ঞাপনজগতে ভারতীয় কোনো ক্রীড়াতারকার এটাই সবচেয়ে বড় চুক্তি। সম্প্রতি ভারতের একটি টায়ার কোম্পানির সঙ্গেও নাকি চুক্তি করেছেন কোহলি, যা থেকে বছরে পাবেন সাড়ে ছয় কোটি রুপি। টেন্ডুলকার ও অস্ট্রেলিয়ার সাবেক অধিনায়ক স্টিভ ওয়াহ আগে থেকেই চেন্নাইভিত্তিক এই এমআরএফ কোম্পানির শুভেচ্ছাদূত।গত বছর বিজ্ঞাপনী চুক্তি থেকে কোহলির আয় ছিল ৪০ কোটি রুপি। সেসব তো আছেই, এর সঙ্গে নতুন চুক্তি দুটি মিলিয়ে বর্তমানে ১৩টি কোম্পানির শুভেচ্ছাদূত কোহলি। অন্য দেশের ক্রিকেটাররা হিংসা করতেই পারেন! ওয়েবসাইট।বরিশাল নগরের নৌবন্দরের পোর্ট রোড সড়কটি যান চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। সড়কে খানাখন্দের কারণে হেঁটে চলাফেরা করতেও লোকজনকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। ২০০৯ সালের পর সড়কের কোনো সংস্কারকাজ হয়নি। সড়কটি অভ্যন্তরীণ নৌপরিবহন কর্তৃপক্ষের (বিআইডব্লিউটিএ) অধীনে থাকায় সিটি করপোরেশন এর সংস্কারকাজ করছে না।সরেজমিনে দেখা গেছে, সড়কের বিভিন্ন স্থানে বড় বড় গর্ত হয়ে ডোবায় পরিণত হয়েছে। লোকজন এই সড়কে হেঁটেও চলাচল করতে পারছে না। কাদা ও খানাখন্দের ওপর দিয়েই প্রতিদিন মালবাহী ট্রাকসহ বিভিন্ন যান চলাচল করছে।পোর্ট রোড এলাকার ব্যবসায়ী শেখ জয়নাল আবেদিন বলেন, ২০০৯ সালে সড়কটি সংস্কার করে বিআইডব্লিউটিএ। তখন নিম্নমানের কাজ হওয়ায় এক বছরের মধ্যে সড়কটি খানাখন্দে ভরে যায়। একদিকে বড় বড় গর্ত, অন্যদিকে রড বের হয়ে থাকায় বড় দুর্ঘটনা ঘটে যেতে পারে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা মাঝেমধ্যে ইট ও খোয়া দিয়ে কোনো রকমে ঝুঁকি নিয়ে চলাচলের ব্যবস্থা করেন। এ ব্যাপারে বিআইডব্লিউটিএ বরিশালের নির্বাহী প্রকৌশলী এ জেড এম শাহনেওয়াজ কবির প্রথম আলোকে বলেন, সড়কটি সংস্কারে এক কোটি ২০ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে।কুমিল্লার চান্দিনার মাধাইয়া এলাকায় গত মঙ্গলবার সড়ক দুর্ঘটনায় তিনজন নিহত হয়েছেন। পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার দিবাগত রাত তিনটার দিকে ওই এলাকায় একটি লরি ও একটি পিকআপভ্যানের মুখোমুখি সংঘর্ষ হয়। এতে পিকআপের চালক নোয়াখালীর চাটখিলের মাইন উদ্দিন (৩৮), আরোহী মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলার নাছির উদ্দিন (৩৫) ও চালকের সহকারী রনি (১৫) ঘটনাস্থলেই মারা যান।  দাউদকান্দি (কুমিল্লা) প্রতিনিধিপ্রভাবশালী সংবাদ সাময়িকী টাইম-এর সর্বশেষ সংখ্যায় বিদায়ী বছরের সবচেয়ে আলোচিত অনেক ছবি ছাপা হয়েছে। ‘দ্য ইয়ার ইন পিকচার্স’ শিরোনামে ছাপা ছবিগুলোর মধ্যে প্রথমেই স্থান পেয়েছে বাংলাদেশের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ ঘটনার একটি ছবি। দুই পাতাজুড়ে ছাপা ছবিটি গত এপ্রিলে সাভারের রানা প্লাজা ধসের পর উদ্ধারকাজ চলার সময় তোলা। কংক্রিটের স্তূপের নিচে একে অন্যকে ধরে থাকা অবস্থায় চাপা পড়ে আছেন একজন নারী ও একজন পুরুষ।টাইম ছবিটির শিরোনাম দিয়েছে ‘শেষ আলিঙ্গন’। হতভাগ্য ওই নারী-পুরুষ ছিলেন সম্ভবত দম্পতি। নয়তলা ভবনটি মাথার ওপর ধসে পড়ার সময় হয়তো একে অন্যকে আঁকড়ে ধরেছিলেন। সেই অবস্থায় পিষ্ট হয়েছেন বিশাল কংক্রিটের স্তূপের নিচে।ছবিটি তুলেছেন আলোকচিত্রী তাসলিমা আক্তার। তিনি লিখেছেন, ‘যতবার আমি ছবিটির দিকে তাকাই, প্রতিবার অস্বস্তি বোধ করি। আমার মনে হয়, ছবির দুই নারী-পুরুষ বলছেন, “আমরা শুধু একটা সংখ্যা নই। নই শুধু সস্তা শ্রমিক বা সস্তা প্রাণ। আমরাও তোমাদের মতো মানুষ।”’
গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার তৃতীয় সম্মেলন গতকাল শুক্রবার শহরের চাষাঢ়ায় শহীদ মিনারে অনুষ্ঠিত হয়েছে। সম্মেলনে বক্তারা পোশাকশ্রমিকদের দাবি মেনে নেওয়ার দাবি জানান।প্রধান অতিথির বক্তৃতায় বাংলাদেশ ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সহসভাপতি লুৎফর রহমান বলেন, আট হাজার টাকা ন্যূনতম মজুরির দাবির বিপরীতে ৬০০ টাকা বাড়াতে চেয়ে মালিকপক্ষ পোশাকশ্রমিকদের সঙ্গে মশকরা করেছে। তাঁদের প্রতি অমর্যাদা দেখিয়েছে।সমেঞ্চলনে শহরের বিভিন্ন পোশাক কারখানা থেকে কয়েক হাজার শ্রমিক অংশ নেন। সমেঞ্চলনের উদ্বোধন করেন গার্মেন্ট শ্রমিক ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় সভাপতি মন্টু ঘোষ। সংগঠনের জেলা শাখার সভাপতি এম এ শাহিনের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে বক্তৃতা করেন ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের কেন্দ্রীয় কমিটির কার্যকরী সভাপতি সাদিকুর রহমান শামীম, জেলা সিপিবির সভাপতি হাফিজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক বিমল কান্তি দাস, দুলাল সাহা, আবদুল হাই শরীফ, ইকবাল হোসেন প্রমুখ।দাদিকে কুপিয়ে হত্যা এবং মাকে আহত করার পর এক তরুণ বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালিয়েছেন। সাতক্ষীরার কলারোয়া উপজেলার বড়ালি গ্রামে গতকাল সোমবার এই ঘটনা ঘটে।উপজেলার সোনাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) ১ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য বড়ালি গ্রামের বাসিন্দা রেজাউল ইসলাম জানান, বড়ালি গ্রামের কামরুল ইসলাম গাজীর ছেলে মোখলেছুর রহমান (২৬) এক সপ্তাহ আগে মালয়েশিয়া থেকে কারাভোগ করে দেশে ফিরে আসেন। গতকাল বেলা দুইটার দিকে হঠাৎ করে তিনি তাঁর মা আনোয়ারা খাতুনকে (৪০) দা দিয়ে কুপিয়ে আহত করেন। এ সময় তাঁর মাকে রক্ষা করতে সেখানে এগিয়ে এলে তিনি তাঁর দাদি জাহানারা খাতুনকেও (৬০) কুপিয়ে আহত করেন। পরে তিনিও বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালান। স্থানীয় লোকজন আশঙ্কাজনক অবস্থায় উদ্ধার করে তাঁদের সাতক্ষীরা সদর হাসপাতালে ভর্তি করার পর বিকেল চারটার দিকে জাহানারা খাতুন মারা যান।জাহানারার মেয়ে পুতুল খাতুন জানান, তাঁর ভাতিজা মোখলেছুর রহমান পাঁচ মাস আগে অনেক টাকা খরচ করে মালয়েশিয়া গিয়েছিল। কিন্তু সেখানে গিয়ে কারাভোগের পর সপ্তাহ খানেক আগে দেশে ফেরার কারণে তার মানসিক সমস্যা দেখা দেয়। এই কারণে গতকাল সে (তার ভাতিজা) তাঁর মা ও দাদিকে কুপিয়ে আহত করার পর বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়। পরে তাকে উদ্ধার করে কলারোয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ দারা খান জানান, ঘটনাটি তিনি শুনেছেন। এ ব্যাপারে কেউ অভিযোগ দেয়নি। অভিযোগ পেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেবেন।সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুর উপজেলায় গত মঙ্গলবার রাতে দুটি মন্দিরের ১১টি প্রতিমা ভাঙচুর করেছে দুর্বৃত্তরা। একই রাতে চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়ায় আগুন দেওয়া হয়েছে আরেকটি মন্দিরে। এতে মন্দিরটির আসবাব পুড়ে যায়। এ ঘটনায় হিন্দু সম্প্রদায়ের মধ্যে ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে।এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরের পোরজনা ইউনিয়নের জামিরতা উত্তরপাড়ার কালীমন্দির ও হরিমন্দির দুটি শত বছরের পুরোনো। মঙ্গলবার গভীর রাতে পাশাপাশি অবস্থিত দুটি মন্দিরে কে বা কারা ১১টি প্রতিমা ভাঙচুর করে। তাণ্ডবের পর দুর্বৃত্তরা চলে যাওয়ার সময় পাশেই মন্দিরের সেবায়েত জ্যোতিষ চন্দ্র ঘোষ ও পার্শ্ববর্তী আয়নাল হোসেনের বিশাল দুটি খড়ের পালায় আগুন ধরিয়ে দেয়। পরে এলাকাবাসী ঘটনাস্থলে ছুটে এসে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।মন্দির কমিটির অন্যতম সদস্য স্বপন সান্যাল বলেন, মধ্যরাতে আগুন দেখে এলাকাবাসী ঘরের বাইরে বেরিয়ে আসে। তারা অনেক চেষ্টার পর খড়ের পালা দুটির আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এতে অল্পের জন্য রক্ষা পায় এলাকার শতাধিক ঘরবাড়ি।শাহজাদপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) হাসান শামিম ইকবাল বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। এ ঘটনায় থানায় মামলা হয়েছে। দোষীদের খুঁজে বের করে তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।চট্টগ্রামের রাঙ্গুনিয়া উপজেলার দক্ষিণ রাজানগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এনামুল হক মিয়া বলেন, দক্ষিণ রাজানগরের রাজাভুবন শিবমন্দিরে মঙ্গলবার গভীর রাতে আগুন দেয় দুর্বৃত্তরা। রাতে গুলির শব্দ শুনে এলাকাবাসী জেগে ওঠে। এ সময় তারা শিবমন্দিরে আগুন দেখে দ্রুত ঘটনাস্থলে যায়। আগুনে মন্দিরের আসবাবপত্র পুড়ে যায়। তবে প্রতিমাগুলো অক্ষত রয়েছে।রাঙ্গুনিয়া থানার পরিদর্শক (ওসি) মো. ওয়ালিউল্লাহ অলি বলেন, কে বা কারা মন্দিরে আগুন দিয়েছে, তা নিশ্চিতভাবে বলা যাচ্ছে না। আগুনে মন্দিরের পুরোহিতের ঘরটিও পুড়ে গেছে। এ ব্যাপারে থানায় মামলা হচ্ছে।ফেনীর সোনাগাজীতে গত শুক্রবার রাতে দুর্বৃত্তরা গবিধন মিয়া নামে যুবলীগের এক নেতাকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেছে।পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, সোনাগাজী উপজেলার ছাড়াইতকান্দি গ্রামের গবিধন মিয়াকে (৩৮) গত শুক্রবার দিবাগত রাত দেড়টার দিকে চার-পাঁচজন দুর্বৃত্ত বাড়ি থেকে ডেকে নিয়ে যায়। রাতে তিনি আর বাড়ি ফেরেননি।গতকাল শনিবার সকালে গ্রামের লোকজন বাড়ির পাশে তাঁতিপুকুর পাড়ে তাঁকে রক্তাক্ত ও অচেতন অবস্থায় দেখতে পান। পরে তাঁরা গবিধন মিয়াকে প্রথমে সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করেন। সেখান থেকে সকালেই তাঁকে ফেনী সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়।পরে তাঁকে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়।সোনাগাজী উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সোনাগাজী সদর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান সামছুল আরেফিন জানান, গবিধন মিয়া ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক কমিটির সদস্য।সোনাগাজী উপজেলা স্বাস্থ্য কর্মকর্তা ছারোয়ার জাহান জানান, গবিধন মিয়াকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে মারাত্মক আহত করা হয়েছে। আঘাতের কারণে তাঁর ডান চোখের অবস্থাও ভালো নয়।সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সুভাষ চন্দ্র পাল জানান, তিনি গ্রাম পুলিশের মাধ্যমে বিষয়টি শুনেছেন।
আওয়ামী লীগের নেতাদের উদ্দেশে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য গয়েশ্বর চন্দ্র রায় বলেছেন, দেশের মানুষের কল্যাণে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচন দিয়ে সৃজনশীল রাজনৈতিক ধারা গঠনে এগিয়ে আসুন। নয়তো আপনারা পালানোর পথ খুঁজে পাবেন না।গতকাল শুক্রবার সকালে ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলার আগানগর ইউনিয়ন বিএনপির কার্যালয়ে এইচএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া কৃতী শিক্ষার্থীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে গয়েশ্বর এ কথা বলেন। আগানগর ইউনিয়ন ছাত্রদল আয়োজিত ওই অনুষ্ঠানে আগানগর ও শুভাঢ্যা ইউনিয়নের শতাধিক কৃতী শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়।গয়েশ্বর আরও বলেন, একদলীয় নির্বাচন প্রতিহত করতে বর্তমান প্রজন্মের সৃজনশীল ছাত্ররাই এগিয়ে আসবে।অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির জাতীয় নির্বাহী কমিটির সদস্য অপর্ণা রায় দাস, দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক আহসান উল্লাহ চৌধুরী, জিঞ্জিরা ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান মোজাদ্দেদ আলী প্রমুখ।কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকির অভিযোগে দায়ের করা মামলার অভিযোগপত্র (চার্জশিট) জমা দিয়েছে পুলিশ। গত রোববার বিকেলে কুষ্টিয়া গোয়েন্দা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও মামলার তদন্ত কর্মকর্তা পারভেজ ইসলাম এই মামলার অভিযোগপত্র জমা দেন।মামলার একমাত্র আসামি জহিরুল ইসলাম কুষ্টিয়া কারাগারে আছেন। তিনি রাজধানীর কারওয়ান বাজারে অবস্থিত রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরো কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক।এজাহার সূত্রে জানা গেছে, এক মাস আগে একটি মুঠোফোন থেকে কয়েক দফায় জেলা প্রশাসক ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের হত্যার হুমকি দেওয়া হয়। ৯ অক্টোবর জেলা প্রশাসক থানায় জিডি করেন। পুলিশ ওই দিনই ঢাকা থেকে জহিরুল ইসলামকে গ্রেপ্তার করে।প্রিয় ক্যাম্পাসেই থাকছেন সিলেটের শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের জনপ্রিয় শিক্ষক মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হক।বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিল স্নাতক (সম্মান) প্রথম বর্ষের ভর্তি পরীক্ষায় গুচ্ছ পদ্ধতি বহাল রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়ায় এবং শিক্ষার্থীদের ভালোবাসার টানে তাঁরাও পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে এসেছেন। এ পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে। জাফর ইকবাল এ বিশ্ববিদ্যালয়ের কম্পিউটার বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক। তাঁর স্ত্রী ইয়াসমিন হক পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক।যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে একই সঙ্গে একই প্রশ্নে পরীক্ষা নেওয়ার এ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল দুই বিশ্ববিদ্যালয়। কিন্তু শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ পরে এ সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসে। এ সিদ্ধান্তের সঙ্গে একমত হতে পারেননি জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হক। ফলে তাঁরা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেন। তাঁদের এ সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের দাবিতে গত মঙ্গলবার রাতেই ক্যাম্পাসে শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা অবস্থান নেন।এ অবস্থায় গতকাল বুধবার দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক হয়। বৈঠকে যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নেওয়ার আগের সিদ্ধান্তে ফিরে যায় কাউন্সিল। বৈঠকে ৩০ নভেম্বরের নির্ধারিত ভর্তি পরীক্ষা স্থগিতের আগের সিদ্ধান্ত বহাল রাখা হয়। এ পরীক্ষার সময়সূচি পরে জানানো হবে।বিশ্ববিদ্যালয়ের একাডেমিক কাউন্সিলের অন্যতম সদস্য ও বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, বৈঠকে গুচ্ছ পদ্ধতিতে ভর্তি পরীক্ষা স্থগিত করার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করে নেওয়ার পাশাপাশি মুহম্মদ জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হকের পদত্যাগপত্র প্রত্যাহার করে নিতে উপাচার্য তাঁদের অনুরোধ করবেন বলে সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়।বৈঠক শেষে বেলা আড়াইটার দিকে উপাচার্য মো. আমিনুল হক ভূঁইয়া জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হকের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পরে তাঁরা তিনজন ও অন্য শিক্ষকেরা প্রশাসনিক ভবনের সামনে আগে থেকেই অবস্থান নিয়ে থাকা শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বক্তব্য দেন। এ সময় উপাচার্য গুচ্ছ পদ্ধতি বহাল রাখার বিষয়টি শিক্ষার্থীদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানান।সেখানে জাফর ইকবাল বলেন, ‘সমন্বিত ভর্তি পরীক্ষা বাতিলের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করা হয়েছে। একাডেমিক কাউন্সিল থেকে আমাদের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের অনুরোধ করা হয়েছে। দেশের সর্বোচ্চ মহল থেকেও আমাদের একই অনুরোধ করা হয়েছে। তাই আমরা আমাদের প্রিয় বিশ্ববিদ্যালয়ে সুখ-দুঃখ-আনন্দ-কষ্টে একসঙ্গে থেকে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ইয়াসমিন হক শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ‘তোমাদের ছেড়ে আমরা যেতে পারি? কখনো না। তোমাদের সঙ্গে আমরা এই ক্যাম্পাসেই থাকব।’জনপ্রিয় দুই শিক্ষকের পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসায় ক্যাম্পাসে আনন্দ-উল্লাস করেন শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।গত মঙ্গলবার জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হক যৌথভাবে ‘প্রিয় শাবিপ্রবি’ নামে একটি খোলা চিঠি লিখেছিলেন। গতকাল পদত্যাগের সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার পর তাঁরা একই শিরোনামে আরেকটি খোলা চিঠি লিখেছেন। জাফর ইকবাল নিজ হাতে লেখা সেই চিঠি গতকাল সাধারণ শিক্ষার্থীদের পড়ে শোনান।চিঠিতে বলা হয়, পদত্যাগের সিদ্ধান্ত নেওয়ার পর সহকর্মী ও ছাত্রছাত্রীদের যে প্রতিক্রিয়া তিনি (জাফর ইকবাল) দেখেছেন, সেটি কখনো আশা করেননি। চিঠিতে তিনি লেখেন, ‘...আমাদের বিভাগের শিক্ষকেরাও পদত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। অন্য শিক্ষকেরাও একই কথা বলেছেন। ছাত্রছাত্রীরা সব সময় তীব্র আবেগ নিয়ে কথা বলে, তাদের এই আবেগ যুক্তি দিয়ে নিবৃত্ত করা সম্ভব নয়। আমরা সেই চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছি। সবার ভালোবাসা উপেক্ষা করার ক্ষমতা আমাদের নেই।’বর্তমান পরিস্থিতির নেপথ্যে: বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, প্রথম বর্ষের ভর্তিতে এবার যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে সমন্বয় করে গুচ্ছ পদ্ধতির পরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গুচ্ছ পদ্ধতির ভর্তি কার্যক্রমে মেধার অবমূল্যায়ন হতে পারে—এ দাবি করে সিলেটের বাম ও প্রগতিশীল রাজনৈতিক সংগঠনের নেতারা ওই পদ্ধতি বাতিলের দাবি জানান। গতকাল দুপুরে নগরের পুরান লেন এলাকায় এক জরুরি সভা করে তাঁরা ‘গুচ্ছ পদ্ধতিতে পরীক্ষা নিতে হলে দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ে তা নেওয়া উচিত’ বলে মত দেন।আবার বিএনপি-জামায়াত-সমর্থক রাজনীতিবিদ, অভিভাবক ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের নেতাদের সমন্বয়ে ‘সচেতন সিলেটবাসী’র ব্যানারে ছিল আরেকটি পক্ষ। এ পক্ষও গুচ্ছ পদ্ধতি বাতিলে আন্দোলন শুরু করে। তবে তারা শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়ে সিলেটি শিক্ষার্থীদের জন্য ৫০ ভাগ কোটা সংরক্ষণের দাবি জানায়।এ পক্ষও গত রাতে নগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক রেজাউল হাসান লোদীর কার্যালয়ে সভা করেন। রেজাউল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সমন্বিত ভর্তি পদ্ধতির বিরুদ্ধে নই। আমরা চাই এটা যেন অপেক্ষাকৃত নবীন কোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে না হয়। সমমর্যাদার বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে হয়।’এর বাইরে ছিলেন জাফর ইকবাল, ইয়াসমিন হক ও তাঁদের অনুসারী বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকদের একটি বড় অংশ। এই শিক্ষকেরা গুচ্ছ পদ্ধতির পক্ষে ছিলেন।বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের ওই দুই পক্ষের যুগপৎ তৎপরতার মুখে মঙ্গলবার বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ একাডেমিক কাউন্সিলের জরুরি বৈঠক ডেকে গুচ্ছ পদ্ধতি স্থগিত করার ঘোষণা দেয়। ৩০ নভেম্বরের ভর্তি পরীক্ষাও স্থগিত করা হয়। এ ঘোষণার পর জাফর ইকবাল ও ইয়াসমিন হক গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় পদত্যাগের ঘোষণা দেন। তাঁরা নিজ নিজ পদত্যাগপত্রে সই করে তা উপাচার্যের কাছে পাঠান। পরে দুজনের যৌথ স্বাক্ষরে ‘প্রিয় শাবিপ্রবি’ শিরোনামে একটি খোলা চিঠি প্রকাশ করে নিজেদের অবস্থান ব্যাখ্যা করেন।রাতে ক্যাম্পাসে ককটেল বিস্ফোরণ: শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে রাতে সাতটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে। রাত প্রায় সাড়ে নয়টার দিকে উপাচার্যের বাসভবনের পাশের ফাঁকা জায়গায় তিনটি ককটেল ফাটানো হয়। এর পরে ক্যাম্পাসের গোল চত্বরে একটি এবং ছাত্র হল ও টিচার্স কোয়ার্টারের মধ্যবর্তী স্থানে পরপর তিনটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ সময় ক্যাম্পাসে অবস্থানরত সিলেট মহানগর পুলিশের জালালাবাদ থানার টহল পুলিশ একটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে।ক্যাম্পাস সূত্র জানায়, ছাত্রী হলের পাশে ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শুনে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের একটি দল হল থেকে বের হয়ে জাফর ইকবালের বাসায় যায়। বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মোস্তাবুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, ক্যাম্পাসে পুলিশ পাহারা বাড়াতে সংশ্লিষ্ট থানাকে বলা হয়েছে।সব বাধা-বিপত্তি উপেক্ষা করে দলীয় নেতা-কর্মীদের ঢাকামুখী ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ সফল করার আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমান। গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এই আহ্বান জানান।বিবৃতিতে আবদুল্লাহ আল নোমান বলেন, চলমান আন্দোলনে ১৮-দলীয় জোটের বিজয় সুনিশ্চিত। জনগণের সঙ্গে যুদ্ধ করে অতীতে কোনো স্বৈরাচার টিকে থাকতে পারেনি। এই সরকারও পারবে না। নোমান আরও বলেন, সরকার বিএনপি-আতঙ্ক রোগে ভুগছে। ঢাকামুখী ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’য় জনস্রোত ঠেকাতে সরকার অঘোষিত অবরোধ পালন করছে। দমন-পীড়ন ও গণগ্রেপ্তার করে স্বৈরতন্ত্রের বিরুদ্ধে জনগণের গণ-আন্দোলন বন্ধ করার ক্ষমতা এই সরকারের নেই।
কক্সবাজারের টেকনাফের সদর ইউনয়নের কচুবনিয়া এলাকা থেকে গতকাল শুক্রবার দুপুরে চার হাজার ইয়াবা বড়িসহ দুই ব্যক্তিকে গ্রেপ্তার ও একটি মোটরসাইকেল জব্দ করেছে পুলিশ। আটক ব্যক্তিরা হলেন সদর ইউনিয়নের কচুবনিয়া এলাকার আবদুল হাফিজ (৩০) ও মৌলভীপাড়ার শামসুল আলম (৩০)। টেকনাফ মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) দিদারুল ফেরদৌস বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে পুলিশ অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেলের সিটের নিচ থেকে পলিথিন মোড়ানো অবস্থায় ইয়াবা উদ্ধার করে। পাচারকারী দুজনের বিরুদ্ধে মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে। টেকনাফ (কক্সবাজার) প্রতিনিধি।স্টেডিয়ামের পাশেই বিশাল জায়গা নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে বাসস্ট্যান্ড। তার পরও কমলাপুর বীরশ্রেষ্ঠ মোস্তফা কামাল স্টেডিয়ামের সীমানাদেয়ালের ভেতরে রাখা সারি সারি ড্রিমলাইন, স্টারলাইনের বাস। ঢাকা-ফেনী, ঢাকা-নোয়াখালী, ঢাকা-বান্দরবান ও ঢাকা-খাগড়াছড়ি লাইনের বাস এগুলো। আছে ট্রাক-কাভার্ড ভ্যান।এই বাসের টিকিট কাউন্টারগুলো স্টেডিয়ামের ভেতরে নয়। স্টেডিয়ামসংলগ্ন অস্থায়ী চা-বিড়ির দোকানের পাশে বসানো হয়েছে। হরতাল বা রাজনৈতিক অস্থিরতার সময় অবশ্য বাসমালিকেরা তাঁদের গাড়িগুলো সরিয়ে নেন নিরাপদে। তবে ওই সময় জায়গাটা দখল করে রাখে বিভিন্ন কুরিয়ার প্রতিষ্ঠানের পণ্য বহনকারী গাড়ি। গতকালও স্টেডিয়ামে গিয়ে দেখা গেছে এমন বেশ কয়েকটি গাড়ি। সংরক্ষিত এলাকা, কিন্তু গণপরিবহণের মতো বাসস্ট্যান্ডের কারণে হয়ে পড়েছে অরক্ষিত। অথচ এসব নিয়ে কোনো মাথাব্যথাই নেই জাতীয় ক্রীড়া পরিষদের (এনএসসি)!স্টেডিয়াম প্রশাসক মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলমের যোগসাজশে বাসগুলো পার্কিং করা হয় বলে জানালেন স্টেডিয়ামের মার্কেট সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন, ‘স্টেডিয়ামের বর্তমান প্রশাসক আসার পর থেকেই এ অবস্থা চলছে। প্রশাসককে ম্যানেজ করে বাসমালিকেরা অবৈধভাবে গাড়ি পার্কিং করছেন। বিষয়গুলো জানিয়ে এনএসসি বরাবর অনেকবার চিঠি দিয়েছি আমরা। কমলাপুর স্টেডিয়ামের প্রশাসককেও চিঠি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হয়নি। এখান থেকে সরকার তাই রাজস্বও হারাচ্ছে।’স্টেডিয়ামের ভেতরে মিনি বাসস্ট্যান্ড গড়ে তোলা হয়েছে। অথচ সেটা নাকি জানেনই না স্টেডিয়ামের মালিক এনএসসির পরিচালক (প্রশাসন) হাবিবুর রহমান, ‘আমরা এ ব্যাপারে কিছুই জানি না।’ পরে যোগ করলেন, ‘ওখানকার স্থানীয় একটি মাস্তান গ্রুপ জোর করে বাসগুলো স্টেডিয়ামের ভেতরে রাখে। কিছুদিন ওই রাস্তায় বাঁশ দিয়ে রেখেছিলাম। এরপর প্রধান গেট দিয়ে গাড়ি ঢোকানোর চেষ্টা করেছিল। সরকার এটা গুরুত্ব দিয়ে দেখলে হয়তো ওখান থেকে এসব বাস সরিয়ে দেওয়া যাবে।’স্টেডিয়ামের প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম যুক্তি দিলেন, ‘গেট খোলা থাকে বলে হঠাৎ করে এসব বাস ঢুকে পড়ে। আমরা অনেকবার বের করে দিয়েছি।’ তবে অবৈধ পার্কিংয়ের জন্য টাকা নেওয়ার বিষয়টা তিনি অস্বীকার করেছেন, ‘এটা মোটেও সত্যি নয়।’স্টেডিয়ামের সীমানাদেয়াল ভেঙে গেছে। সেখানে ময়লা-আবর্জনা স্তূপ করে রাখায় জায়গাটা ভাগাড়ে পরিণত হয়েছে। শুধু স্টেডিয়াম নয়, কমলাপুর মাঠের অবস্থাও করুণ। মাঠের মধ্যে গোছা গোছা হাঁটুসমান আগাছা। কাদাপানিতে ভরা। মাঠের কোনো পরিচর্যা নেই। খেলোয়াড়দের বসার টেন্টও ভাঙাচোরা। ডাগ-আউটের একপাশে পড়ে আছে সেটি। অথচ আগামী ৪ নভেম্বর শুরু হবে ফেডারেশন কাপ ফুটবল। এমন মাঠেই খেলতে হবে পেশাদার ফুটবলারদের!রাজনৈতিক অস্থিরতায় পর্যটনশূন্য হয়ে পড়েছে বান্দরবান। পর্যটক না থাকায় আবাসিক হোটেলগুলোর দুর্দিন চলছে। কোলাহলমুখর আকর্ষণীয় স্থানগুলোও পর্যটনের ভরা মৌসুমে খাঁ খাঁ করছে। প্রায় এক বছর ধরে লোকসানে থাকা কিছু হোটলমালিক কর্মচারী ছাঁটাই করেও শেষ রক্ষা করতে না পারায় দিশেহারা হয়ে পড়েছেন।নীলাচলের কাউন্টার ব্যবস্থাপক জয় ত্রিপুরা জানান, গত ফেব্রুয়ারি থেকে নীলাচলসহ পর্যটন স্থানগুলোতে কিছু ভাসমান দর্শনার্থী ছাড়া আবাসিক পর্যটক আসা একেবারে কমে গেছে। এ জন্য নীলাচলে গত জানুয়ারিতে যেখানে দুই লাখ ১৯ হাজার টাকার টিকিট বিক্রি হয়েছে, সেখানে নভেম্বরে ৬০ হাজার টাকাও পাওয়া যাচ্ছে না।আবাসিক হোটেল মালিক সমিতি সূত্র জানায়, জেলা শহরে ছোট-বড় প্রায় ৫০টি আবাসিক হোটেল রয়েছে। ব্যবসা না থাকায় কিছু কিছু হোটেল ইতিমধ্যে বন্ধ হয়েছে। যেগুলো চালু রয়েছে, সেগুলোও রয়েছে মারাত্মক সংকটে।বান্দরবান জেলা শহরের প্রবেশমুখের মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সের কর্মকর্তা মেমং মারমা বলেন, গত বছর এ সময়ে মেঘলা পর্যটন কমপ্লেক্সে দৈনিক দেড় থেকে দুই হাজার টিকিট বিক্রি হয়েছিল। কিন্তু এ বছরের কয়েক মাস ধরে গড়ে দেড় শ টিকিটও বিক্রি হচ্ছে না। পর্যটকসংকটের এ রকম বিপর্যয়ে বান্দরবানে আগে কখনো পড়েনি।আবাসিক হোটেল মালিক সমিতির সভাপতি ও পর্যটন মোটেলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক হুমায়ুন আহমদ জানান, ফেব্রুয়ারিতে হরতাল ও রাজপথে সহিংসতা শুরু হওয়ার পর থেকে ব্যবসায় মন্দা যাচ্ছে। গত সেপ্টেম্বর থেকে লোকজন আসা প্রায় বন্ধ হয়ে গেছে। অনেক দেশি-বিদেশি পর্যটকেরা ভ্রমণসূচি বাতিল করে হোটেলে অগ্রিম দেওয়া টাকা ফেরত নিয়েছেন। তাঁর পর্যটন মোটেলে এ পর্যন্ত দুই-তৃতীয়াংশ কর্মচারী ছাঁটাই করতে বাধ্য হয়েছেন বলে জানান তিনি।হোটেল ফোর স্টারের মালিক মানিক বিশ্বাস বলেন, ‘গত তিন-চার মাসে ব্যবসা নেই বললেই চলে। এ অবস্থায় ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে নির্মিত আরেকটি নতুন হোটেল চালু করার সাহস পাচ্ছি না। ব্যাংকের কিস্তি দিতে না পেরে ওই হোটেল বিক্রি করতে বাধ্য হচ্ছি।’মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক সিরাজুল ইসলাম জানান, ঋণের কিস্তি শোধ করতে অনেক হোটেলমালিক এখন ভূসম্পত্তি বিক্রি করছেন। এ অবস্থার পরিবর্তন না হলে হোটেল ব্যবসা বন্ধ হয়ে যাবে। হরতাল ও সহিংসতা বন্ধের জন্য রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আহ্বান জানান তিনি।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলম বলেছেন, প্রজনন স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা কার্যক্রম তরুণদের সুন্দর ভবিষ্যত্ বিনির্মাণে সহায়তা করবে। এর মাধ্যমে তাঁরা নিরাপদ কৈশোর ও তারুণ্য নিশ্চিত করতে পারবেন।গতকাল শনিবার সকালে চট্টগ্রামের ফুলকি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত যুব মেলায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে মেয়র এ কথা বলেন। পপুলেশন সার্ভিসেস অ্যান্ড ট্রেনিং সেন্টারের (পিএসটিসি) ইউনাইট ফর বডি রাইটস প্রকল্পের আওতায় এ মেলার আয়োজন করা হয়।দিনব্যাপী কর্মসূচিতে ছিল শোভাযাত্রা, গোলটেবিল বৈঠক, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ইত্যাদি। অনুষ্ঠানে প্রায় ৩০০ তরুণ-তরুণী, চিকিত্সক, মানবাধিকারকর্মী ও শিক্ষাবিদেরা উপস্থিত ছিলেন।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের আওতাধীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে কাউন্সেলিং কেন্দ্র ও সেবাকেন্দ্র স্থাপনের আশ্বাস দিয়েছেন মেয়র মন্জুর আলম।এদিকে, ‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়াবলি সিলেবাসে অন্তর্ভুক্তিকরণ’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপস্থিত ছিলেন কবি ও সাংবাদিক আবুল মোমেন, চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক পীযূষ দত্ত, উপসচিব মাহবুব হাসান, যুব উন্নয়ন অধিদপ্তরের উপপরিচালক মোখলেসুর রহমান, পরিবার পরিকল্পনা অধিদপ্তরের উপপরিচালক ডা. শেখ মো. রুকুনুদ্দিন, সাংবাদিক কামরুল হাসান প্রমুখ।অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন সংগঠনের চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক সৈয়দ মো. নুরুদ্দিন।
কুমিল্লা-সিলেট মহাসড়কের ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর উপজেলার দক্ষিণ জাঙ্গাল গ্রাম থেকে গতকাল শুক্রবার ১৫০ কেজি গাঁজাসহ দুজনকে গ্রেপ্তার ও একটি ট্রাক আটক করেছে র‌্যাব। আটক ব্যক্তিরা হলেন কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার ডিমাতলা গ্রামের দেলোয়ার হোসেনের ছেলে রুহুল আমিন (৩০) ও বগুড়া সদর উপজেলার কালিবালা গ্রামের মো. হৈবর মিয়ার ছেলে মো. রকি (২০)। র‌্যাব-৯ ভৈরব ক্যাম্পের অধিনায়ক মেজর সাকিব সিদ্দিকী বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে গাঁজা উদ্ধার করা হয়। গ্রেপ্তার ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর থানায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা করা হয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া প্রতিনিধি।বিয়ে শুধু দুজন নারী-পুরুষের দাম্পত্য জীবনই নয়, এ ক্ষেত্রে যুক্ত হয় দুটি ভিন্ন পরিবার—তাদের সংস্কৃতি, জীবনযাপন। আমাদের সমাজে নানা কারণেই মেয়েদের জন্য বিয়ে বিষয়টি চ্যালেঞ্জিং। নিজের পরিবার ছেড়ে আসার কষ্ট সামলাতে না-সামলাতেই শ্বশুরবাড়ির এক অচেনা পরিবেশ ও জীবনযাপনের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে হয় অধিকাংশ মেয়েকে। হঠাৎ করেই পাল্টে যায় তাঁর বহুদিনের অভ্যস্ত জীবনযাপন।বিয়ে-পরবর্তী এই নাজুক সময়টাতে কীভাবে নতুন পরিবেশে মানিয়ে নেওয়া যাবে আর শ্বশুরবাড়ির সদস্যরাই বা এ ক্ষেত্রে কীভাবে সাহায্য করতে পারেন, তার ওপর অনেকাংশেই নির্ভর করে একটি সুন্দর দাম্পত্য জীবন।এ প্রসঙ্গে একটি বহুলপ্রচলিত বিতর্ক থেকেই যায়। বউয়ের সঙ্গে শ্বশুরবাড়ির সম্পর্কে দায়ভার কার বেশি? বউ, না শ্বশুরবাড়ির? আসলে যেকোনো সম্পর্কই পারস্পরিক আস্থার ওপর গড়ে ওঠে। তাই এ ব্যাপারে নতুন বউয়ের যেমন দায়িত্ব থাকে, তেমনি সমান দায়িত্ব বর্তায় শ্বশুরবাড়ির। তবে সবচেয়ে বেশি দায়িত্ব থাকে স্বামীর। স্ত্রীর সঙ্গে বাড়ির একটি সুন্দর সম্পর্ক তৈরিতে স্বামীর বলিষ্ঠ ও কৌশলী ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। স্বামীর কৌশল নিয়ে পরে আলোচনায় আসি। প্রথমে জানা যাক, স্বকীয়তা ঠিক রেখে কীভাবে একটি মেয়ে অচেনা পরিবেশকে নিজের করে নিতে চেষ্টা করতে পারেন।নতুন বউয়ের করণীয় মানসিক প্রস্তুতি: শ্বশুরবাড়িতে যাওয়ার আগেই মাথায় রাখতে হবে যে সেখানকার পরিবেশ তাঁর এত দিনের চেনা পরিবারের মতো না। যেমন—সেই পরিবারের আচার-আচরণ, খাবারদাবার, জীবনযাপনের ধরন, রুচি ইত্যাদি। এ ক্ষেত্রে আগেই যদি তিনি শ্বশুরবাড়ির পরিবেশ নিয়ে স্বামী বা অন্য কারও কাছ থেকে ধারণা নিয়ে রাখেন, তবে মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে। সময় নিন: শ্বশুরবাড়ির সব বিষয়ে জড়িত হওয়ার আগে সময় নিন। পরিবারের সবার মনমানসিকতা বোঝার চেষ্টা করুন। আপনার কাছে তাঁরা কী আশা করেন, সেটা জানার চেষ্টা করুন। একই সঙ্গে আপনাকেও তাঁদের বুঝতে দিন। নিজের ভালো লাগা, মন্দ লাগার বিষয়গুলো গল্পচ্ছলে জানান। যোগাযোগ স্থাপন: শ্বশুরবাড়ির মানুষের সঙ্গে আন্তরিকভাবে কথা বলুন। নিজের পরিবারের সঙ্গে যেভাবে মিশতেন, সেভাবে মেশার চেষ্টা করুন। শ্বশুরবাড়ির ত্রুটি-বিচ্যুতি: শ্বশুরবাড়ির কোনো কিছু ভালো না লাগলে সে বিষয় তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়া না দেখানোই ভালো। মনে রাখবেন, সবকিছুরই ভালো-মন্দ থাকে। তাই খারাপটাকে উপেক্ষা করে যদি ভালো দিকগুলোর প্রতি মনোযোগী হন, তবে অনেক কিছুই সহজ হয়ে যায়। সুতরাং, তাঁদের ভালো দিকগুলো গ্রহণ করুন। যে বিষয়গুলো আপনার ভালো লেগেছে, তার প্রশংসা করুন। সামান্য প্রশংসা আপনার জন্য অনেক কিছু সহজ করবে। অন্যের সমালোচনায় যোগ না দেওয়া: শ্বশুরবাড়ির কেউ অন্য কারও সমালোচনা করলে আপনি তাতে যোগ দেবেন না। একজনের কথা অন্যজনকে বলা থেকে বিরত থাকুন। রূঢ় আচরণে প্রতিক্রিয়া: কারও আচরণে কষ্ট পেয়ে থাকলে মনের মধ্যে পুষে রাখবেন না। তবে সেটা এমনভাবে প্রকাশ করুন, যাতে সেই ব্যক্তির মনে আঘাত না লাগে বা লজ্জা না পায়; কিন্তু বুঝতে পারেন যে আপনি কষ্ট পেয়েছেন। এ ক্ষেত্রে রূঢ় হওয়া বা অতিমাত্রায় নমনীয় থাকা—কোনোটাই ঠিক নয়। সমালোচনার ক্ষেত্রে: কেউ আপনার সমালোচনা করলে তর্ক করবেন না। মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শুনুন। সমালোচনা গ্রহণযোগ্য হলে ভুল স্বীকার করুন। গ্রহণযোগ্য না হলে উপেক্ষা করুন। নিজেকে প্রতিষ্ঠা করতে সময় নিন: মনে রাখবেন, শুধু শ্বশুরবাড়ি নয়, যেকোনো পরিবেশে খাপ খাওয়াতে সময় লাগবে। এ সময়টুকুতে আপনি আপনার নিজস্বতা ঠিক রেখেই যদি গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি হিসেবে নিজেকে তুলে ধরতে পারেন, তবে সময়ের সঙ্গে অনেক কিছুই আপনার অনুকূলে চলে আসবে। তাই এই প্রাথমিক মানিয়ে নেওয়ার সময়টাতে আপনার ধৈর্য, বিবেচনা আর সহনশীলতাই নির্ধারণ করবে শ্বশুরবাড়ির অচেনা পরিবেশটা কতটুকু আপনার নিজের হয়ে উঠল।স্বামীর ভূমিকাস্ত্রী এবং শ্বশুরবাড়ির সম্পর্কের ক্ষেত্রে সবচেয়ে নাজুক ও টানাপোড়েনের জায়গাটিতে থাকেন স্বামী। তবে তাঁর বিচক্ষণতা, বুদ্ধিমত্তা এই জটিল বিষয়টিকে অনেক সহজ করতে পারে। মনে রাখুন, নিজের পরিবার ছেড়ে আসার কষ্ট এবং সেই সঙ্গে নতুন পরিবেশকে মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টা—এই দুই-ই স্ত্রীর জন্য বেশ কঠিন। এ সময়ে স্ত্রীর জন্য স্বামীর আন্তরিক চেষ্টা এবং ভালোবাসার কোনো বিকল্প নেই। প্রথমেই স্ত্রীর প্রতি আপনার সহযোগী মনোভাব ব্যক্ত করুন। তাঁর যেকোনো সমস্যায় আপনি তাঁর পাশে আছেন, সে বিষয়ে আশ্বস্ত করুন। বাড়ির পরিবেশ, নিয়ম-রীতি এবং সবার সম্পর্কে স্ত্রীকে প্রাথমিক ধারণা দিন। তাঁদের প্রত্যেকের সঙ্গে তাঁর কী রকম দায়িত্ব হবে, সেটা স্পষ্ট করে বলুন। স্ত্রী ও পরিবারের সদস্যদের সমান মনোযোগ দিন। কারও সামনে কাউকে হেয় করবেন না। স্ত্রী সম্পর্কে পরিবারের সামনে অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস প্রকাশ থেকে বিরত থাকুন। নতুন পরিবেশে স্ত্রী কোনো অসুবিধাবোধ করলে সেটা বোঝার চেষ্টা করুন। মনোযোগ দিয়ে তাঁর কথা শুনুন। তাঁর সমস্যা আপনি বুঝতে পেরেছেন, সেটা প্রকাশ করুন এবং মানিয়ে নিতে সাহায্য করুন। স্ত্রীর সঙ্গে একান্ত সময় কাটান, গল্প করুন, বাইরে বেড়ান। এ ক্ষেত্রে পরিবারের সমালোচনা উপেক্ষা করুন। একই সঙ্গে তাঁদের প্রতি মনোযোগ বাড়িয়ে দিন। তাঁদের প্রতি আপনার ভালোবাসা যে আগের মতোই আছে, সেটা নানাভাবে প্রকাশ করুন। শ্বশুরবাড়ি মানে স্ত্রীর পরিবারের প্রতি আন্তরিকতা দেখান। তাঁদের খোঁজখবর নিন। তাঁদের পারিবারিক অনুষ্ঠানে যান। স্ত্রীর কাছে তাঁদের সমালোচনা থেকে বিরত থাকুন। নতুন পরিবেশে স্ত্রীর মানিয়ে নেওয়ার চেষ্টাকে প্রশংসা করুন। অন্যের সামনে তাঁর সমালোচনা করা থেকে বিরত থাকুন। গল্পচ্ছলে আপনার কাছে আপনার পরিবারের গুরুত্বের কথা স্ত্রীকে জানান। মা, ভাবি বা বোনের গুণের সঙ্গে স্ত্রীকে তুলনা করবেন না। কোনো ভুলত্রুটি করলে তাঁর আত্মমর্যাদাবোধকে সম্মান করে বুঝিয়ে বলুন।লেখক: সহকারী অধ্যাপক, জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট১৮-দলীয় জোটের ডাকা অবরোধের দ্বিতীয় দিন গতকাল বুধবার রাজধানীর পল্লবীতে সময় টেলিভিশনের দুই সাংবাদিককে এবং বগুড়ার ধুনটে প্রথম আলোর এজেন্ট সঞ্জয় কুমার সাহাকে (২৫) মারধর করেছে দুর্বৃত্তরা। এ ছাড়া চাঁদপুর শহরে সময় ও এসএ টিভির দুই সাংবাদিককে লক্ষ্য করে ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। হামলা করা হয়েছে আরও দুই স্থানীয় সাংবাদিকের ওপর। নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে পত্রিকাবাহী গাড়িতে অবরোধকারীরা হামলা চালিয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।গতকাল সকাল সোয়া সাতটার দিকে রাজধানীর পল্লবীর কালসি রোডে ককটেল বিস্ফোরণের ভিডিও চিত্র ধারণকালে সময় টেলিভিশনের প্রতিবেদক জাফর সাদিক ও ক্যামেরাম্যান পাভেলকে মারধর করে দুর্বৃত্তরা। হামলাকারীরা তাঁদের কাছ থেকে ক্যামেরা কেড়ে নিয়ে আছড়ে ভেঙে ফেলে। তাঁদের সহকর্মীরা অভিযোগ করেন, স্থানীয় যুবলীগের নেতারা এই হামলা চালিয়েছে। এতে তাঁদের নাক ও গলায় জখম হয়েছে।অবশ্য পুলিশের পল্লবী অঞ্চলের সহকারী কমিশনার কামাল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, পিকেটার ডেকে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটিয়েছে সন্দেহ করে জাফর সাদিক ও পাভেলকে স্থানীয় লোকজন মারধর করেছে। পরে পুলিশ তাঁদের উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠায়। ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় গ্রেপ্তার যুবক রোকনকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।ধুনট (বগুড়া): উপজেলায় প্রথম আলোর এজেন্ট সঞ্জয় কুমার গতকাল সকাল নয়টার দিকে শেরপুর থেকে মোটরসাইকেলে পত্রিকা নিয়ে ধুনটে আসার পথে ভরনশাহী গ্রামের কাছে অবরোধকারীদের কবলে পড়েন। এ সময় জামায়াত-শিবির ও বিএনপির কর্মীরা পথরোধ করে তাঁকে পিটিয়ে আহত করেন। সঞ্জয় কুমার বলেন, অবরোধকারীরা তাঁকে মারধরের পর মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করেন।উপজেলা জামায়াতের আমির রেজাউল করিম ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে এ ঘটনা ঘটেছে। তাঁর চিকিৎসা ও মোটরসাইকেল মেরামতের ব্যয়ভার বহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’চাঁদপুর: শহরের সড়ক ও জনপথ ভবনের সামনে বেলা সাড়ে ১১টার দিকে সময় টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি ফারুক আহমেদ ও এসএ টিভির চাঁদপুর প্রতিনিধি জি এম শাহীনকে লক্ষ্য করে একটি ককটেল নিক্ষেপ করা হয়। ককটেলটি মাত্র দুই হাত দূরে বিস্ফোরিত হয়।এর আগে মঙ্গলবার চাঁদপুরে স্থানীয় আলোকিত চাঁদপুর পত্রিকার ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক জাকির হোসেন ও স্থানীয় সাংবাদিক ইলিয়াছ খানের ওপর হামলা চালান ১৮-দলীয় জোটের কর্মীরা।নোয়াখালী: বেগমগঞ্জের চৌমুহনী চৌরাস্তার কাছে চৌমুহনী-মাইজদী সড়কের কন্ট্রাক্টর পোল এলাকায় গতকাল বুধবার ভোর পাঁচটার দিকে ঢাকা থেকে সংবাদপত্রবাহী ওই মাইক্রোবাসটি বেগমগঞ্জের কন্ট্রাক্টর পোল এলাকায় পৌঁছালে অবরোধকারীদের বাধার মুখে পড়ে। পত্রিকার গাড়ি অবরোধের আওতামুক্ত বলে চালক তাঁদের যেতে দেওয়ার অনুরোধ করেন। কিন্তু তাঁরা উল্টো গাড়িতে আগুন দেওয়ার হুমকি দিলে গাড়িটি ঢাকায় ফিরে যেতে বাধ্য হয়। ফলে গতকাল নোয়াখালী জেলা শহর, সুবর্ণচর, হাতিয়া ও বেগমগঞ্জের চন্দ্রগঞ্জ এলাকার পাঠকেরা প্রথম আলো পাননি। বেগমগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাজিম উদ্দিন বলেন, বিষয়টি তাঁকে কেউ জানায়নি। জানালে গাড়িটি গন্তব্যে পৌঁছাতে সহায়তা করা যেত।জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক কামাক্ষ্যা চন্দ্র দাস বলেন, ঘটনাটি তাঁর জানা ছিল না। খোঁজ নিয়ে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।এর আগে গত তিনটি হরতালেও জেলার বিভিন্ন স্থানে সংবাদপত্রবাহী গাড়িতে ভাঙচুর করা হয়।ডিইউজের নিন্দা: অবরোধ কর্মসূচিতে গত মঙ্গলবার নয়াপল্টনে বিএনপির প্রধান কার্যালয়ের সামনে পেশাগত দায়িত্ব পালনকালে সাংবাদিকের ওপর বোমা হামলার প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) একাংশ। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে সংগঠন দুটির আয়োজনে প্রতিবাদ সমাবেশ থেকে গণমাধ্যমকর্মীদের ওপর হামলাকারীদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়।বিরোধী দলের ডাকা ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ প্রতিহত করার কর্মসূচির অংশ হিসেবে গতকাল শনিবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় পতাকা মিছিল করেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ।রাজধানীর কারওয়ান বাজার, সেগুনবাগিচা ও প্রেসক্লাব এলাকায় লাঠি ও ক্রিকেট স্ট্যাম্পে পতাকা বেঁধে মিছিল করেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা ‘পাকিস্তানের খালেদা, পাকিস্তানে চলে যা’ বলে স্লোগান দেন।ঢাকা মহানগর আওয়ামী লীগের উপ-দপ্তর সম্পাদক জামালউদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, সাংগঠনিক থানা কলাবাগান, ধানমন্ডি. হাজারীবাগ, নিউমার্কেট, রমনা, লালবাগ, সূত্রাপুর, কোতোয়ালি, ডেমরা, শ্যামপুর, বিমানবন্দর, ক্যান্টনমেন্ট, খিলক্ষেত, উত্তরা, তুরাগ, কাফরুল, মিরপুর, পল্লবী, খিলগাঁও ও সুবাজবাগ এলাকায় একইভাবে পতাকা মিছিল করেছেন দলের নেতা-কর্মীরা।এদিকে গতকাল বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউয়ে মহানগর আওয়ামী লীগের বর্ধিত সভায় একই সভায় দলের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, ‘বিএনপির গণতন্ত্রের অভিযাত্রা গণতন্ত্রের সঙ্গে হাস্যকর রসিকতা। আমরা কাল রাজনৈতিক ও সাংগঠনিকভাবে ঢাকার সব পথে পাহারায় থাকব। আর নাশকতা প্রতিরোধে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী থাকবে কঠোর অবস্থানে।’ তিনি নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ‘আপনারা গায়ে পড়ে উসকানি দেবেন না। যদি জনগণের জানমালের ক্ষতি হয়, তাহলে বসে থাকবেন না।’মহানগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, ঢাকায় ঢোকার আটটি পয়েন্ট দিয়ে আগামীকাল যেন কোনো মাছিও না আসতে পারে।’ তিনি বলেন, ‘যদি এই পথ দিয়ে কোনো শয়তান ঢোকে, তাহলে সেখানকার দায়িত্বে থাকা নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই সব কমিটি বিলুপ্ত করা হবে। আর যারা ভালো কাজ করবে, তাদের পুরস্কৃত করা হবে।’
বাংলাদেশের প্রথম গলফার হিসেবে বিশ্বকাপে সুযোগ পেলেন সিদ্দিকুর রহমান। র‌্যাঙ্কিংয়ের ওপর ভিত্তি করেই বিশ্বকাপে সুযোগ পান গলফাররা। প্রতিটি দেশের সর্বোচ্চ র‌্যাঙ্কিংধারী দুজন জায়গা পান বিশ্বকাপে। শীর্ষ পনেরোর মধ্যে থাকলে একটি দেশ থেকে সর্বোচ্চ চারজন সুযোগ পেতে পারেন। এই হিসাবেই সারা বিশ্ব থেকে বেছে নেওয়া হয় ৬০ জন গলফার। আগামী ২০ নভেম্বর অস্ট্রেলিয়ার রয়্যাল মেলবোর্ন গলফ ক্লাবে শুরু হতে যাওয়া বিশ্বকাপ গলফে দলগত ও ব্যক্তিগত দুই বিভাগেই খেলা হবে। যেহেতু বাংলাদেশের অন্য কেউ নেই, তাই সিদ্দিকুর খেলবেন শুধু ব্যক্তিগত বিভাগে।প্রথমবারের মতো বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পেয়ে এশিয়া-প্যাসিফিক প্যানাসনিক ওপেন খেলতে এখন জাপানে অবস্থান করা সিদ্দিকুর এশিয়ান ট্যুর ওয়েবসাইটকে বলেছেন, ‘বিশ্বকাপে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করার সুযোগ পেয়ে আমি রোমাঞ্চিত। প্রথমবারের মতো বাংলাদেশ বিশ্বকাপে যাচ্ছে, এটা হবে ঐতিহাসিক এক মুহূর্ত। আমি এর আগে বাছাইপর্ব খেললেও মূল প্রতিযোগিতায় যেতে পারিনি। তাই এটা বিশাল অর্জন।’এটা বাংলাদেশে গলফের জনপ্রিয়তা বাড়াতেও সাহায্য করবে বলে বিশ্বাস সিদ্দিকুরের, ‘এটা আমাদের দেশে বড় ধরনের প্রভাব ফেলবে। বাংলাদেশে গলফ ক্রমেই জনপ্রিয় হচ্ছে, দেশে লোকজন আমাকে চেনে। দেশের পতাকা বহনের দায়িত্ব পেয়ে আমি গর্বিত।’প্যানাসনিক ওপেনে দুই রাউন্ড মিলিয়ে পারের সমান ১৪২ শট খেলে ২৫ নম্বরে আছেন সিদ্দিকুর।সর্বশেষ শিরোপা জয়ের পর কেটে গেছে ১২ বছর। এবার কি শিরোপা উঠবে আবার রোমার হাতে? এখনো অনেক দূরের পথ, কিন্তু রোমা যেভাবে ছুটছে, তাতে আশাটা এবার উজ্জ্বল। পরশু উদিনেসেকে মাইকেল ব্র্যাডলির গোলে হারিয়ে (১-০) রোমা করেছে আরেকটা রেকর্ড। টানা নয় ম্যাচ জিতে রোমাই সিরি ‘আ’র ইতিহাসে সবচেয়ে ভালো শুরু করল। এর আগে ২০০৫-০৬ মৌসুমে জুভেন্টাসও করেছিল একই কীর্তি। কিন্তু ম্যাচ পাতানোর কেলেঙ্কারিতে জড়ানোয় জুভেন্টাসের কীর্তিটা মুছে গেছে রেকর্ড বই থেকে।ইতালিতে অবশ্য দুর্দান্ত রোমাকে তাড়া করছে জুভেন্টাস, নাপোলি। পরশু জুভেন্টাস ২-০ গোলে হারিয়েছে জেনোয়াকে। গঞ্জালো হিগুয়েইনের জোড়া গোলে নাপোলি হারিয়েছে তুরিনোকে। নয় ম্যাচ শেষে দুই দলই রোমার (২৭) চেয়ে পিছিয়ে আছে ৫ পয়েন্টে। শেষ মুহূর্তে গোল খেয়ে পারমার কাছে ৩-২ গোলে হেরে বসেছে দশে থাকা এসি মিলান।ইতালিতে যদি ‘চমকের’ নাম রোমা হয়, স্পেনে সেটা অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদ। রিয়াল মাদ্রিদের প্রতিবেশীদের কল্যাণে লা লিগা এ মৌসুমের এখন পর্যন্ত ‘তিন ঘোড়ার দৌড়’। পরশু তো অ্যাটলেটিকো ৫-০ গোলে বিধ্বস্ত করেছে রিয়াল বেটিসকে। জোড়া গোল করেছেন ডেভিড ভিয়া। গোল করেছেন ডিয়েগো কস্তাও। লা লিগার সবচেয়ে বেশি গোল এখন এই স্ট্রাইকারের (১১)। শীর্ষে থাকা বার্সার (২৮) চেয়ে মাত্র ১ পয়েন্ট পেছনে অ্যাটলেটিকো!ফ্রান্সে অবশ্য সে রকম কোনো চমক নেই। অনুমিতভাবেই শিরোপা লড়াইয়ে এগিয়ে পিএসজি-মোনাকো। পরশু অবশ্য পিএসজি মৌসুমের প্রথম হারের স্বাদ প্রায় পেয়েই গিয়েছিল। মাতুইদির অতিরিক্ত সময়ের গোলে সেঁত এতিয়েনের সঙ্গে কোনোমতে ড্র করতে পারে ফ্রান্স চ্যাম্পিয়নরা (২-২)। অলিম্পিক লিওঁকে ২-১ গোলে হারিয়ে পিএসজির সমান ২৫ পয়েন্ট মোনাকোরও। তিন ম্যাচ পর গোল পেয়েছেন ফ্যালকাও। এএফপি।ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া উপজেলার রেললাইন ও সরকারি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার করতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যানদের চিঠি দিয়েছেন।চিঠিতে দেশের বিরাজমান পরিস্থিতিতে দুষ্কৃতকারীরা যাতে নাশকতা করতে না পারে, সেদিকে ইউনিয়ন পরিষদকে নজর রাখতে বলা হয়েছে। গত মঙ্গলবার চিঠিটি পাঠানো হয়েছে। কয়েকজন ইউপি চেয়ারম্যান ইতিমধ্যে চিঠি পেয়ে গেছেন। চিঠিতে গ্রাম-পুলিশ ও পরিষদের সদস্যদের মাধ্যমে রেলপথে পাহারা ও সরকারি স্থাপনার নিরাপত্তা জোরদার করতে অনুরোধ করা হয়েছে। একই সঙ্গে রেলপথে নাশকতাকারীদের বিষয়ে তথ্য পাওয়া মাত্র আখাউড়া থানা ও আখাউড়া রেলওয়ে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার মুঠোফোনে জানাতে বলা হয়েছে। চিঠিতে ওই দুইটি থানার ওসির মুঠোফোন নম্বর উল্লেখ করা হয়েছে।আখাউড়ার মনিয়ন্দ ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল ওয়াহাব ভূঁইয়া গতকাল বুধবার বেলা তিনটার দিকে প্রথম আলোকে জানান, তিনি এখনো চিঠিটি হাতে পাননি। তবে ইউএনও ফোন দিয়ে জানিয়েছেন, পরিষদের গ্রাম-পুলিশ ও ইউপি সদস্যরা গ্রামের সাধারণ মানুষকে সঙ্গে নিয়ে বুধবার (গতকাল) ভোর থেকে তাঁর ইউনিয়নের ঢাকা-চট্টগ্রাম রেলপথের ওপর নজর রাখছেন।ইউএনও মো. খুরশীদ শাহরিয়র প্রথম আলোকে বলেন, উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে চিঠি দেওয়া হয়েছে।চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপকূল দিয়ে মালয়েশিয়ায় মানব পাচারের চেষ্টার ঘটনায় মামলা হয়েছে। মামলায় আনোয়ারার চার দালালসহ নগরের আরও কয়েকজনকে আসামি করা হয়েছে।পুলিশ সূত্র জানায়, গত বৃহস্পতিবার রাতে আনোয়ারা উপকূল দিয়ে মালয়েশিয়া যাওয়ার চেষ্টাকালে ৫৪ জনকে আটক করা হয়।তবে, মানব পাচারের চেষ্টার ঘটনায় আনোয়ারার রায়পুরের কামাল উদ্দিন, আবদুল হক, আবদুল হাকিম ও জসিম উদ্দিনের নাম উল্লেখ করে আরও কয়েকজনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের প্রথম বর্ষের ছাত্র জাহেদুল ইসলামকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়েছে। ময়নাতদন্তে এ আলামত পেয়েছেন চিকিৎসক। এদিকে পুলিশ এখনো এ হত্যাকাণ্ডের তদন্তে কোনো কূলকিনারা করতে পারেনি।গত ২৭ আগস্ট চট্টগ্রামের চান্দগাঁও থানার শমসেরপাড়ায় চট্টগ্রাম ইন্টারন্যাশনাল ডেন্টাল কলেজের ১০ তলা মূল ভবনের পূর্ব পাশের শৌচাগারের সামনে থেকে জাহেদুলের লাশ উদ্ধার করা হয়।পুলিশ ও কলেজ কর্তৃপক্ষ জাহেদুলের মৃত্যুকে প্রাথমিকভাবে আত্মহত্যা বলে ধারণা করেছিল। তবে জাহেদুলকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করার অভিযোগ এনে তাঁর বাবা জসিম উদ্দিন চান্দগাঁও থানায় মামলা করেন।জাহেদুলের গ্রামের বাড়ি চট্টগ্রামের বোয়ালখালী উপজেলার পূর্ব চরণদ্বীপ ইউনিয়নে।চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রভাষক ও ময়নাতদন্তকারী চিকিৎসক প্রদীপ কুমার নাথ প্রথম আলোকে বলেন, জাহেদুলের কোমরের ওপরে ছুরিকাঘাত করা হয়েছে। এ ছাড়া শরীরের বিভিন্ন অংশে জখমের চিহ্ন রয়েছে। আত্মহত্যা করলে শরীরে এত জখমের চিহ্ন থাকত না। তাঁকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে। তিনি বলেন, মারধরের কারণে জাহেদুলের মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর দুর্বৃত্তরা তাঁর লাশ ভবনের ছাদ থেকে নিচে ফেলে দেয়।ময়নাতদন্ত প্রতিবেদনে দেখা যায়, জাহেদুলের বুকের পাঁজর, বাঁ হাত ও বাঁ ঊরু ভাঙা ছিল। আঘাতের ফলে কিডনি, লিভার ও ফুসফুস নষ্ট হয়ে যায়। চিকিৎসক জানান, জাহেদুলের মাথায়ও আঘাত করা হয়েছে। এতে তাঁর মস্তিষ্কে রক্তক্ষরণ হয়েছে।চান্দগাঁও থানা পুলিশের সুরতহাল প্রতিবেদনেও কোমরের ওপরের অংশে এক ইঞ্চি দৈর্ঘ্য ও আধা ইঞ্চি প্রস্থের কাটা জখমের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে।জাহেদুলের বাবা জসিম উদ্দিন বলেন, ‘আমার নিরপরাধ ছেলেকে যারা খুন করেছে, তাদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেওয়া হোক। আমি ছেলে হত্যার সুষ্ঠু তদন্ত ও বিচার চাই।’মামলার তদন্ত কর্মকর্তা চান্দগাঁও থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আরিফুর রহমান বলেন, ‘মাত্র ১৫ মিনিটের ব্যবধানে এ ঘটনা ঘটে। এখন পর্যন্ত এর কোনা ক্লু উদ্ধার করতে পারিনি। তবে এ ঘটনায় কলেজের ছাত্র-শিক্ষক ও নার্সসহ প্রায় ২৫ জনকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।’কলেজের অধ্যক্ষ মোসলেম উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, জাহেদুলের মৃত্যুর ঘটনায় গঠিত কমিটি তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। কলেজের গভর্নিং বডি তা প্রকাশ করবে।গাড়ি ভাঙচুর, ককটেল বিস্ফোরণ, দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ এবং ধাওয়া-পাল্টাধাওয়ার মধ্য দিয়ে চট্টগ্রাম নগরে গতকাল সোমবার হরতালের দ্বিতীয় দিন পার হয়েছে।গতকাল বিরোধী দলের কর্মী-সমর্থকদের পাশাপাশি সরকারি দলের নেতা-কর্মীরাও সরব ছিলেন রাজপথে। ‘জয় বাংলা’ আর ‘বাংলাদেশ জিন্দাবাদ’ স্লোগানের মধ্যে নগরের বিভিন্ন জায়গায় উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। সকালের দিকে নগরের বড়পুল থেকে হালিশহর এসি মসজিদ পর্যন্ত পিসি সড়কে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের কর্মীরা পাল্টাপাল্টি মিছিল বের করলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। সেখানে একটি সমাবেশে বিএনপির কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল্লাহ আল নোমানের বক্তৃতা করার কথা ছিল। বক্তৃতার আগেই উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে গেলে তিনি বক্তৃতা না দিয়েই ফিরে যান। পরিস্থিতি সামাল দিতে পুলিশ ২৫টি কাঁদানে গ্যাসের শেল ও ৭০টি রাবার বুলেট ছোড়ে। এতে ওই এলাকা রণক্ষেত্রে পরিণত হলেও কোনো হতাহতের ঘটনা ঘটেনি।বন্দর অঞ্চলের অতিরিক্ত উপকমিশনার আরেফিন জুয়েল প্রথম আলোকে বলেন, পিসি সড়ক এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বেধে যাওয়ার কারণে পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পুলিশের উপস্থিতিতে দুপুর ১২টার দিকে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এলে নগর বিএনপির সভাপতি আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী পিসি সড়কের সমাবেশে যোগ দেন। এর কিছুক্ষণ আবদুল্লাহ আল নোমানও ওই সমাবেশে বক্তৃতা করে সরকারবিরোধী আন্দোলন আরও জোরদার করার তাগিদ দেন।এ ছাড়া সকালের দিকে নগরের নাসিমন ভবন এলাকার একটি সমাবেশে বত্তৃদ্ধতা করেন সাবেক প্রতিমন্ত্রী মীর মোহাম্মদ নাছির উদ্দিন। তিনি পরে হাটহাজারীর কর্মসূচিতে যোগ দেন। এদিকে বিভিন্ন জায়গায় গতকাল বিএনপির নেতা-কর্মীরা হরতালের সমর্থনে বিক্ষোভ-সমাবেশ করেন। আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে পাল্টা হরতালবিরোধী মিছিল ও সমাবেশ হয়। এতে নগরের দেওয়ানহাট, বন্দরটিলা ও সিমেন্স হোস্টেল এলাকায় দুই পক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া হয়। নগরের বন্দরটিলা এলাকায় আওয়ামী লীগের সমাবেশের অদূরে বিএনপি সমাবেশ করার চেষ্টা করলে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। গতকাল দুপুর ১২টার দিকে একপর্যায়ে আওয়ামী লীগের কর্মীরা বিএনপির কর্মীদের ধাওয়া করে সিমেন্ট ক্রসিংয়ের দিকে পাঠিয়ে দেন। পরে পুলিশ দুই পক্ষের মাঝখানে অবস্থান নিলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়। এদিকে গতকাল বেলা সাড়ে ১১টার দিকে নগরের দেওয়ানহাট এলাকায় আওয়ামী লীগ ও বিএনপির কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ হয়েছে। সেখানেও পুলিশ পরিস্থিতি স্বাভাবিক করার জন্য ভূমিকা রাখে। পরে দুপুরের দিকে আওয়ামী লীগ হরতালবিরোধী সমাবেশ করে।এদিকে আগের দিন রোববারের তুলনায় গতকাল নগরে গাড়ির সংখ্যা ছিল বেশি। বিপুলসংখ্যক যাত্রীবাহী বাস, অটোরিকশা ও টেম্পো চলেছে। ভাঙচুরও হয়েছে অসংখ্য গাড়ি। নগরের পলোগ্রাউন্ড, বায়েজিদ, নিউমার্কেট এলাকাসহ বিভিন্ন মোড়ে গাড়ি ভাঙচুর করে পিকেটাররা। এ ছাড়া থেমে থেমে বিভিন্ন মোড়ে অন্তত অর্ধশতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটেছে।নগর পুলিশের বিশেষ শাখার সহকারী কমিশনার নজরুল ইসলাম বলেন, ‘দুই পক্ষের মধ্যে বিভিন্ন জায়গায় ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া, কিছু গাড়ি ভাঙচুর আর কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনায় কেউ গ্রেপ্তার হয়নি।’সাভারে ভয়াবহ রানা প্লাজা দুর্ঘটনার পর বাংলাদেশের তৈরি পোশাকশিল্পে কর্মপরিবেশ উন্নয়নের কাজ মন্থরগতিতে হলেও এগোচ্ছে বলে মন্তব্য করেছে প্রভাবশালীওয়াশিংটন পোস্ট পত্রিকা। তবে পত্রিকাটি বলেছে, আগামী নির্বাচন নিয়ে চলমান বিবাদ এই অগ্রগতিকে আরও মন্থর করে দিতে পারে।গতকাল বুধবার পত্রিকাটিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ওই দুর্ঘটনায় এক হাজার ১০০-এর বেশি পোশাককর্মী নিহত হওয়ার পর আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় ডিএনএ পরীক্ষার উপকরণ সরবরাহ করে। ঢাকাভিত্তিক সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের গবেষণা পরিচালক খোন্দকার গোলাম মোয়াজ্জমের বক্তব্য উদ্ধৃত করে এতে বলা হয়, উপকরণগুলো মার্কিন সরকারের সৌজন্যে এসেছে। এর ফলে শেষ পর্যন্ত হলেও মরদেহগুলো অন্তত নিজেদের পরিচিতি পেয়েছে।প্রতিবেদনে বলা হয়, রানা প্লাজা ধসে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো এখনো ক্ষতিপূরণ পাওয়ার অপেক্ষায় রয়েছে। পোশাক কারখানাগুলোতে প্রতিশ্রুত পরিদর্শনকাজও এখনো বাকি। পোশাক কারখানার নিরাপত্তা-সংক্রান্ত নতুন নিয়মনীতির বিস্তারিত বিষয়ে সরকার এখনো সম্মত হয়নি।রানা প্লাজা ধস ও আরেকটি পোশাক কারখানায় (তাজরীন ফ্যাশনস) অগ্নিকাণ্ডের পর আন্তর্জাতিক সমালোচনার মুখে গত কয়েক মাসে দেশের ভেতরে ও বাইরে অনেক পদক্ষেপই নেওয়া হয়েছে। পোশাক কারখানা পরিদর্শন এবং সংস্কার নিশ্চিত করা নিয়ে আন্তর্জাতিক ক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে চুক্তি সই হয়েছে। তবে পদক্ষেপগুলোর বাস্তবায়নের গতি মন্থর।জানুয়ারিতে অনুষ্ঠেয় নির্বাচন সামনে রেখে কয়েক দফা হরতাল-অবরোধ ও ব্যাপক সহিংসতা কারও কারও মধ্যে এই আশঙ্কার সৃষ্টি করেছে, পোশাকশিল্পের ওপর সরকার যখন নিয়ন্ত্রণ জোরদার করতে চলেছে, তখন পুরো রাজনৈতিক ব্যবস্থাই অচল হয়ে পড়তে পারে।৯৯ পার্বত্য রাঙামাটি আসনে হালনাগাদ ভোটার তালিকায় ভোটার বেড়েছে ৩৯ হাজার ৫৩৬ জন। কিন্তু জাতীয় পরিচয়পত্র না পাওয়ায় তরুণ ভোটাররা ভোটদানের ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্বে রয়েছেন।জেলা নির্বাচন কার্যালয় তরুণ ভোটারদের জাতীয় পরিচয়পত্র না আসার বিষয়টি নিশ্চিত করে বলেছে, কেন্দ্রে গিয়ে নিজেদের ভোটার নম্বর সংগ্রহ করে তরুণ ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন।রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০০৯ সালের নবম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ২৯৯ পার্বত্য রাঙামাটি আসনে মোট ভোটার ছিল তিন লাখ ৩১ হাজার ৮১২ জন। এবারের দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট ভোটারের সংখ্যা তিন লাখ ৭১ হাজার ৩৪৮ জন। ভোটারসংখ্যা বেড়েছে ৩৯ হাজার ৫৩৬ জন।নতুন তালিকাভুক্ত তরুণ ভোটারদের মধ্যে ভোট প্রদানে ব্যাপক আগ্রহ থাকলেও কীভাবে ভোট দেবেন, তা নিয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্ব রয়েছে। ভোটকেন্দ্রে গেলে কোনো সমস্যার সমঞ্চুখীন হতে হবে কি না, তা নিয়ে তাঁরা বেশ চিন্তিত।রাঙামাটি শহরের কালিন্দীপুর এলাকার সোমা তালুকদার বলেন, ‘জীবনে প্রথম ভোট দেওয়ার সুযোগ এসেছে। কিন্তু আমাদের কোনো জাতীয় পরিচয়পত্র দেওয়া হয়নি। তাই ভোটকেন্দ্রে যেতে ভয় পাচ্ছি।’স্বতন্ত্র প্রার্থী ঊষাতন তালুকদারের প্রধান নির্বাচনী এজেন্ট উদয়ন ত্রিপুরা জানান, তাঁরা সব ভোটারের ভোটার নম্বর কার্ড বিতরণ করবেন। সেই কার্ড নিয়ে কেন্দ্রে গেলে নতুন ভোটাররা ভোট দিতে পারবেন।রাঙামাটি জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মো. নাজিম উদ্দিন বলেন, ভোটদানের জন্য জাতীয় পরিচয়পত্র জরুরি বিষয় নয়। নতুন ভোটাররা তাঁদের ভোটার নম্বর নিয়ে সংশ্লিষ্ট কেন্দ্রে নিজেদের ভোট প্রদান করতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট পুলিং ও প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের সেভাবে নির্দেশনা দেওয়া হচ্ছে।
যুক্তরাষ্ট্রপ্রবাসী কবি মোশতাক দাউদী গত বৃহস্পতিবার নিউইয়র্কে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। আগামীকাল রোববার মরদেহ দেশে পৌঁছানোর পর ওই দিন সকালে রাজধানীর সার্কিট হাউস মসজিদে তাঁর জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। মোশতাক দাউদীর কুলখানি উপলক্ষে আগামী মঙ্গলবার (১ অক্টোবর) বাদ আসর তাঁর দুলাভাই গৃহায়ণ ও গণপূর্ত প্রতিমন্ত্রী আব্দুল মান্নান খানের সরকারি বাসভবনে (নিকেতন, ৫ হেয়ার রোড) দোয়া মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি।খেলা তখন অন্তিম পর্যায়ে। ড্রটাকেই মনে হচ্ছিল সম্ভাব্য ফল। আকস্মিকভাবেই ম্যানচেস্টার সিটির হার্ট-নাস্তাসিচের ভুল-বোঝাবুঝিতে গোল করে ফেলেন তোরেস। স্ট্যামফোর্ড ব্রিজ তখন উৎসবে মাতাল। কিন্তু এ কী! হোসে মরিনহো অমন পাগলপারার মতো ছুটে চলেছেন কোথায়! পড়িমরি করে লাফিয়ে পড়লেন তিনি সিটি ডাগ-আউটের পেছনে। উল্লসিত সমর্থকদের মধ্যে কাকে যেন খুঁজছিলেন। ম্যাচটা শেষ হয়ে যায় একটু পরই। কিন্তু পেলেগ্রিনির সঙ্গে করমর্দন না করেই বেরিয়ে যান মাঠ থেকে। তা এত জায়গা থাকতে মরিনহো ওখানে কেন গিয়েছিলেন?ম্যাচ শেষে কৌতূহলটা মিটিয়েছেন মরিনহো নিজেই। জানিয়েছেন, নিজের ১৪ বছর বয়সী ছেলে হোসে মারিওর সঙ্গে আনন্দটা ভাগাভাগি করে নিতেই গিয়েছিলেন ওখানে। কিন্তু ঠিক সিটির ডাগ-আউটের পেছনেই অমন করাটা কি একটু দৃষ্টিকটু ছিল না? মরিনহোর আত্মপক্ষ সমর্থন, ‘আমি আমার ছেলের জন্য পুরো মৌসুমের টিকিট দিতে বলেছিলাম চেলসিকে। তারা সেটা দিয়েছে, কিন্তু প্রতিপক্ষ ডাগ-আউটের পেছনে। দোষটা চেলসিরই। তারা (সিটি) যদি বিশ্বাস করে আমার ছেলে সেখানে ছিল, তাহলে তো ভালোই। কিন্তু যদি তা না করে আর মনে করে আমি ভুল কিছু করেছি, তাহলে আমি ক্ষমা চাইছি।’জানতে চাওয়া হয়েছিল, ম্যাচ শেষে সিটি কোচ পেলেগ্রিনির সঙ্গে হাত মেলাননি কেন? মরিনহো এটাকে বড় করে দেখেননি, ‘অন্য সংস্কৃতিতে বা অন্য দেশে আমরা শুধু ম্যাচ শুরুর আগে হাত মেলাই। এটুকুই যথেষ্ট। ম্যাচ শেষে আমরা সেটা করি না। মাদ্রিদে আমি কখনোই এটা করিনি, তাই আমাদের মধ্যে শ্রদ্ধার কোনো কমতি আছে বলে মনে করি না।’তবে পেলেগ্রিনির কথা শুনলে অন্য রকম ইঙ্গিত পেতে পারেন, ‘আমি তার সঙ্গে হাত মেলাইনি। আমি আসলে এটা চাইনি।’নেপথ্য নায়কদের নিয়ে এই আলোচনায় একটু আড়ালে চলে গেছেন আসল নায়কই। একটা গোল করিয়ে ও জয়সূচক গোলটা করে ফার্নান্দো তোরেসই জিতিয়েছেন চেলসিকে (২-১)। স্প্যানিশ স্ট্রাইকারের পায়ে যেন সেই পুরোনো ঝলক। মরিনহো তাই মেতেছে তোরেস-বন্দনায়, ‘এটা অসাধারণ একটা পারফরম্যান্স ছিল। তার ওপর শুরুতে একটা সহজ গোল মিস করছিল সে। এটা আসলে অসাধারণের চেয়েও বেশি কিছু।’আজই অবশ্য তোরেসরা আবার নামছেন মাঠে। লিগ কাপের চতুর্থ রাউন্ডে চেলসির প্রতিপক্ষ দুর্দান্ত ফর্মে থাকা আর্সেনাল। এএফপি।হরতাল-অবরোধের কারণে ঢাকাসহ দেশের বড় শহরের খুচরা বাজারে সবজির ব্যাপক চাহিদা থাকলেও জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল, পঞ্চগড়ের সদর ও বোদা উপজেলায় সবজি বিক্রি করতে না পেরে বিপাকে পড়েছেন চাষিরা। এসব কর্মসূচির কারণে পাইকারি সবজি ক্রেতাদের দেখা মিলছে না।চাহিদা না থাকায় খেত থেকেও সবজি তুলতে পারছেন না তাঁরা। এ কারণে নতুন করে সবজি ও আলু চাষ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। আবার অনেকে খেত থেকে সবজি তুলে বিক্রি করতে না পেরে লোকসান গুনছেন। এদিকে ক্রেতা না থাকায় আমন ধানের দাম কমে যাওয়ায় বিপাকে পড়েছেন ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলার চাষিরা।উপজেলা কৃষি কার্যালয় থেকে জানা গেছে, ক্ষেতলালের হাটশহর, বাখেরা, নশিরপুর, নাজিরপুর, শিবপুর, শ্যামপুর, মির্জাপুর, রঘুনাথপুর, শহলাপাড়া এবং তেলাল কশুম শহর গ্রামে সবচেয়ে বেশি সবজি চাষ হয়।গতকাল বুধবার সরেজমিনে তেলাল কুশুম শহর গ্রামের তিন মাথা সবজি বাজারে দেখা গেছে, ক্রেতা না থাকায় কৃষকেরা সবজি নিয়ে বসে আছেন। বগুড়ার দুপচাঁচিয়ার সবজি ব্যবসায়ী আবদুল জলিলকে ২৪ মণ বেগুন কিনে বসে থাকতে দেখা যায়।চাষি জীতেন চন্দ্র দাশ ও সুধীন চন্দ্র দাশকে বেগুন, করলাসহ বিভিন্ন জাতের সবজি নিয়ে বসে থাকতে দেখা যায়। জীতেন চন্দ্র বলেন, অবরোধের আগে এক মণ বেগুন বিক্রি হতো ৮০০-৯০০ টাকায়। অবরোধের কারণে দাম সাড়ে ৪০০ থেকে ৫০০ টাকায় নেমে এসেছে।চাষিরা জানান, পঞ্চগড় সদর ও বোদা উপজেলায় ব্যাপক হারে সবজি চাষ করেছেন কৃষকেরা। এবার উৎপাদনও ভালো হয়েছে। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে প্রতিদিন ৮-১০ ট্রাক শাকসবজি জেলার বাইরে গেলেও টানা অবরোধ আর হরতালের কারণে তা বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। ৪৮ ঘণ্টা অবরোধের দ্বিতীয় দিনে গতকাল সকালে পানির দরে পঞ্চগড় বাজারে শীতকালীন সবজি বিক্রি হয়েছে।ক্রেতা না থাকায় ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় আমন ধানের দাম কমে যাচ্ছে। তিন দিনের ব্যবধানে প্রতি মণ আমন ধানের দাম অন্তত দেড় শ টাকা কমেছে। আমন চাষিরা জানান, দুই সপ্তাহ আগে থেকেই পীরগঞ্জের বাইরে থেকে পাইকারেরা ট্রাক্টর নিয়ে এসে ধান কেনা শুরু করেন। সে সময় ধানের বাজারও ভালো ছিল। প্রতি বস্তা (দুই মণ) ‘সুমন স্বর্ণা’ ও ‘গুটি স্বর্ণা’ ধান ১৪০০-১৪৫০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। তিন দিন আগেও বস্তাপ্রতি ধানের দাম ছিল ১১৫০-১২০০ টাকা। কিন্তু গতকাল সকালে পীরগঞ্জ পৌরসভা কলেজহাটে প্রতি বস্তা আমন ধান ৫০০-৬০০ টাকা দরে বিক্রি হয়েছে।ঘন কুয়াশার কারণে চট্টগ্রাম বন্দর জেটিতে ভেড়ানো যাচ্ছে না কনটেইনারবাহী বড় জাহাজ। গতকাল শনিবার ভোরে কুয়াশায় চারটি জাহাজ বহির্নোঙর থেকে জেটিতে ভেড়ানো যায়নি। আজ রোববার সকালে এসব জাহাজ জেটিতে ভেড়ানোর প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে।বন্দর সূত্র জানায়, গতকাল সকাল নয়টায় জোয়ারের সময় নদীতে কুয়াশার কারণে স্বল্প দূরত্বেও কিছু দেখা যায়নি। এ ঝুঁকির কারণে বড় জাহাজ চলাচল বন্ধ ছিল। এসব জাহাজের মধ্যে তিনটি কনটেইনারবাহী এবং একটি জ্বালানি তেলবাহী জাহাজ রয়েছে। বন্দরের উপসংরক্ষক ক্যাপ্টেন নাজমুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, শনিবার ভোরে কুয়াশা বেশি থাকায় বড় জাহাজ চলাচল বন্ধ রাখা হয়। তবে সন্ধ্যার সময় ছোট জাহাজগুলো জেটিতে আনা হয়।বিমান চলাচলেও বিঘ্ন: কুয়াশার কারণে গতকাল শনিবার সকালে বিমান উড্ডয়নে বিলম্ব হয়। তবে সকাল সোয়া ১০টা থেকে বিমান চলাচল শুরু হয়। গতকাল সকালে চারটি উড়োজাহাজ নির্ধারিত সময়ের প্রায় আধা ঘণ্টা পর চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অবতরণ করে। বিমানবন্দরের ব্যবস্থাপক উইং কমান্ডার নূর ই আলম বলেন, কুয়াশার কারণে প্রতিদিন প্রায় এক ঘণ্টা দেরিতে বিমান চলাচল শুরু হচ্ছে।
‘চট্টগ্রামের যে জায়গায় বোমাবাজি হবে, সেই এলাকার সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের নির্দেশদানকারী ৩০ জনের বিরুদ্ধে মামলা দিতে হবে। আর আগামী ২০ অক্টোবরের মধ্যে সেই আসামিদের গ্রেপ্তার করতে হবে। তা না হলে আমাদের বাধ্য করবেন না আইন হাতে তুলে নিতে। আমরা অসাধ্যকে সাধ্য করতে জানি। সন্ত্রাসীদের গণধোলাই দিতে জানি।’গতকাল শুক্রবার দুপুরে নগরের চশমা হিলের বাসভবনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এ বি এম মহিউদ্দিন চৌধুরী এসব কথা বলেন। তিনি হজ পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরবে যাচ্ছেন। এর আগে গতকাল দুপুরে নিজ বাসভবনে চট্টগ্রামের রাজনৈতিক পরিস্থিতি ও নির্বাচনের প্রস্তুতি নিয়ে কথা বলেন। গতকালের সংবাদ সম্মেলনে তাঁর পক্ষে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী।সংবাদ সম্মেলনে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘যারা নির্বাচন ঠেকাতে চায় এবং গণতন্ত্র ধ্বংস করতে চায়, তাদের লক্ষ্য পেছনের দরজা দিয়ে ক্ষমতা দখল করা। নতুন হাওয়া ভবন বানিয়ে লুটপাট এবং দেশে জঙ্গিবাদ কায়েম করা। তাদের আখেরি ইচ্ছা হলো দেশকে পাকিস্তান বানানো। আমরা তা কিছুতেই হতে দেব না। তাদের বাতাসের ধুলোবালুর মতো আমরা উড়িয়ে দিতে পারি।’মহিউদ্দিন চৌধুরী আরও বলেন, ‘জামায়াত-শিবির ও বিএনপি ধর্মান্ধতাকে উসকে দিয়ে নাশকতামূলক কর্মকাণ্ড শুরু করেছে। অবৈধ অস্ত্র নিয়ে ওরা মাঠে নেমেছে। নিরীহ সাধারণ মানুষকে হত্যা করছে। পরিবহনচালককে পুড়িয়ে মারছে। এমনকি পুলিশের ওপর আক্রমণ করে অস্ত্র কেড়ে নিয়ে তাদের হত্যা করা হচ্ছে। বোমা মেরে মেধাবী স্কুলছাত্রীর চোখ নষ্ট করা হয়েছে। সরকারি সম্পদ জ্বালিয়ে-পুড়িয়ে ছাই করা হয়েছে। আদালতেও আগুন দিয়ে সাধারণ মানুষের জায়গা-জমির দলিলপত্র পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। তারা আজ রাষ্ট্র ও সংবিধানের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়েছে।’ আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি সম্পর্কে মহিউদ্দিন চৌধুরী বলেন, ‘চট্টগ্রাম মহানগর এলাকার চারটি আসনে জয় নিশ্চিত করতে আওয়ামী লীগ পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। প্রতিটি ওয়ার্ডে ৬০০ জন কর্মী নিজেদের বাসভবনকে নির্বাচনী দুর্গে পরিণত করবে। প্রতিটি কর্মী ২০ জন করে ভোটারের নাম-ঠিকানা ও তথ্য সংগ্রহ শুরু করেছে। এতে আমাদের কর্মীরা প্রতিটি ওয়ার্ডে ১২ হাজার ভোট রিজার্ভ করে রেখেছে।’ আগামী ঈদের আগেই পশুরহাটে সার্বক্ষণিক পুলিশ ফাঁড়ি বসানোর দাবি জানান মহিউদ্দিন চৌধুরী। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, ‘পশুর বাজার নিয়ে সন্ত্রাস ও চাঁদাবাজি করতে দেওয়া হবে না। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কোরবানির পশু নিয়ে বিক্রেতারা নির্বিঘ্নে যাতে হাটে আসতে পারে, সে জন্য পুলিশ প্রশাসনকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।’রাজনৈতিক অস্থিরতায় চট্টগ্রাম নগরের অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণ কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। এ কারণে গত দুই মাসে কোনো বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়নি। এ সময় অভিযান পরিচালনা করতে পারেননি চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ভ্রাম্যমাণ আদালত।চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আহমেদ গতকাল রোববার প্রথম আলোকে বলেন, ‘হরতাল ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণে সম্প্রতি কোনো অভিযান চালানো সম্ভব হয়নি। তবে শিগগির কর্মসূচি নেওয়া হবে।’করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, নগরে বৈধ বিলবোর্ডের সংখ্যা আট হাজার ৪৫১টি। অবৈধ বিলবোর্ডের সংখ্যা ৩২৩। এর মধ্যে ১১১টি অপসারণ করা হয়েছে। এখন আছে ২১২টি। করপোরেশন ২০১২ সালের ১৬ জানুয়ারি অপসারণ অভিযান শুরু করে।সর্বশেষ অভিযান চালানো হয় গত ২ সেপ্টেম্বর। ওই দিন নগরের মুরাদপুর এলাকা থেকে নয়টি বিলবোর্ড উচ্ছেদ করা হয়।নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিয়া শিরিন বলেন, ‘গত দুই মাসে বিলবোর্ড উচ্ছেদে অন্তত চার দফা সময় নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু হরতাল ও রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে পুলিশ সদস্যরা ওখানেই ব্যস্ত ছিলেন। তাই অভিযান পরিচালনা করা সম্ভব হয়নি।’করপোরেশনের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা আলী আহমেদ বলেন, ভ্রাম্যমাণ আদালত করপোরেশনের আরও অনেক কাজে যুক্ত। তাই বিলবোর্ড অপসারণে প্রতিদিন কর্মসূচি দেওয়া সম্ভব নয়। করপোরেশন সূত্রে জানা গেছে, ভ্রাম্যমাণ আদালত গত ২২ মাসে মাত্র ৩২টি অভিযান পরিচালনা করেন। এ সময় অপসারণ করা হয় ৬১টি বিলবোর্ড। আর মালিক পক্ষের লোকজন সরিয়ে নেয় ৫০টি বিলবোর্ড।এদিকে নগরের অবৈধ বিলবোর্ড দ্রুত সময়ের মধ্যে উচ্ছেদ করতে গত ১৯ জুন চট্টগ্রামের ছয়টি স্থানীয় দৈনিকের সম্পাদক মেয়র মোহাম্মদ মন্জুর আলমকে স্মারকলিপি দিয়েছিলেন।চট্টগ্রামের স্থানীয় দৈনিক আজাদীর সম্পাদক এম এ মালেক প্রথম আলোকে বলেন, ‘নগরের সৌন্দর্য্য রক্ষার জন্য অবৈধ বিলবোর্ড অপসারণে করপোরেশনকে সহযোগিতা করতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তা হয়নি।’ চট্টগ্রামের আরেক স্থানীয় দৈনিক পূর্বকোণ-এর নির্বাহী সম্পাদক ডা. রমিজ উদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘করপোরেশনের সদিচ্ছার অভাবে বিলবোর্ড উচ্ছেদ হচ্ছে না। বরং নগরে নতুন নতুন বিলবোর্ড স্থাপন করা হচ্ছে।’শুষ্ক মৌসুমে পানিপ্রবাহ ধরে রাখতে ঠাকুরগাঁও শহরের টাঙ্গন নদের খননকাজ চলতি বছরের জানুয়ারিতে শেষ হয়। কিন্তু ঠিকাদার যেনতেনভাবে কাজ শেষ করায় বছর না ঘুরতেই আবার নদে বালু জমেছে। নদের বুকে আবার চাষাবাদ শুরু করেছে স্থানীয় লোকজন।পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) থেকে জানা যায়, শুষ্ক মৌসুমে পানিপ্রবাহ ঠিক রাখতে সরকার দেশের মরা নদ-নদীগুলোর জন্য খনন প্রকল্প হাতে নেয়। এরই অংশ হিসেবে পাউবো ‘ঠাকুরগাঁও শহর রক্ষা প্রকল্প’ নামে সদর উপজেলার টাঙ্গন ব্যারাজ থেকে মাতৃগাঁও পর্যন্ত ৩০ কিলোমিটার নদ খননের প্রস্তাব দেয়। এরপর সম্ভাব্যতা যাচাই কমিটি প্রথম পর্যায়ে এক হাজার ১৫০ মিটার খননের সুপারিশ করে। ব্যয় ধরা হয় ৮০ লাখ টাকা।ঠাকুরগাঁওয়ের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান ঐশী এন্টারপ্রাইজ এই কাজ পায়। ২০১২ সালের ১৯ এপ্রিল খননকাজের উদ্বোধন করা হয়। দরপত্রে নদের তলদেশে ১০ মিটার প্রস্থ, ওপরে ২৫ মিটার প্রস্থ ও তিন মিটার গভীর করে কাটার কথা। গত জানুয়ারিতে কাজ শেষ হয়।এদিকে খননকাজ শেষ হওয়ার আগে গত ডিসেম্বরে খননশ্রমিক দলের নেতা শহিদুল ইসলাম জানান, ঠিকাদারের নির্দেশ অনুযায়ী তলদেশে সাত থেকে আট এবং ওপরে ১২ থেকে ১৫ মিটার প্রস্থ এবং এক মিটার গভীর করে নদ খনন করা হয়েছে।২৪ নভেম্বর সরেজমিনে দেখা যায়, জলেশ্বরীতলা মহল্লায় সেতুর নিচে নদের বুকে হালচাষ করছেন মঞ্জুরুল হক নামের এক ব্যক্তি। পাশেই জমি তৈরি করছেন মোহাম্মদ আলম নামের আরেকজন।মঞ্জুরুল জানান, গত বছর নদ খননের জন্য তিনি আবাদ করতে পারেননি। এ বছর আবার চর জাগায় সেখানে গম চাষের জন্য জমি তৈরি করছেন।ঠাকুরগাঁও পৌরসভার সাবেক মেয়র আকবর হোসেন বলেন, নদ খননের জন্য কাজ হয়নি। বিলের টাকা আত্মসাতের জন্য ওই খনন হয়েছিল। তাই বছর না ঘুরতেই যা হওয়ার তা-ই হয়েছে। ঠাকুরগাঁও পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলী নৈমুল হক বলেন, ‘গত বর্ষায় বালু ও পলি এসে নদে পড়েছে। এতে হয়তো নদ কিছুটা ভরাট হয়ে থাকতে পারে। স্থানীয় ব্যক্তিরা সেখানে চাষাবাদ করছে কি না, আমার জানা নেই।’মহাখালী আন্তজেলা বাস টার্মিনালে ঢোকার মুখে ময়মনসিংহগামী থেমে থাকা একটি বাসের সামনে বসে ছিলেন আবদুল মজিদ। ভালুকায় বাড়ি তাঁর। টানা ১১ দিন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ে চিকিত্সা শেষে গতকাল শনিবার দুপুরে বাড়ি যাবেন বলে এসেছিলেন মহাখালীতে। কিন্তু এসে শোনেন বাস বন্ধ। থাকবেন ঢাকায় এমন কোনো আত্মীয় তাঁর নেই। লেপ, বালিশ নিয়ে একটি মাদুর পেতে বসে ছিলেন তিনি। সঙ্গে স্ত্রী ফিরোজা বেগম।মজিদ বলছিলেন, ‘এখন যাইয়াম ক্যামনে, থাকুম কোনহানে?’ জানালেন, সিএনজিচালিত অটোরিকশাগুলো দুই হাজার টাকা ভাড়া চাইছে ভালুকা যেতে। সেই ভাড়া মেটানোর ক্ষমতা তাঁর নেই।তৌহিদুল ইসলাম। আশুলিয়ার একটি পোশাক কারখানায় চাকরি করেন। সকাল সাতটায় পুরান ঢাকার স্বামীবাগের বাসা থেকে বের হয়ে তিনি অবাক। কোনো বাস নেই। ঘণ্টা খানেক অপেক্ষা করে তিনি রিকশা নিয়ে চলা শুরু করেন। অবশেষে ছয় দফা রিকশা পাল্টে, মাঝে দুই দফা অটোরিকশায় চড়ে সকাল নয়টার অফিসে পৌঁছান দুপুর সাড়ে ১২টায়।আজ ২৯ ডিসেম্বর নয়াপল্টনে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের পূর্বঘোষিত ঢাকা অভিমুখে যাত্রা ‘মার্চ ফর ডেমোক্রেসি’র। এই কর্মসূচির প্রস্তুতি ও এতে যোগদান ঠেকাতে গতকাল শনিবার গণপরিবহন বন্ধ করা হয়েছে।গতকাল রাজধানীর বিভিন্ন বাসস্ট্যান্ডের মোড়ে বাসের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে ছিলেন প্রচুর যাত্রী। কিন্তু ছিল না বাস। অনেক সময় পার হওয়ার পর একটি মিনিবাস এলেও মুহূর্তেই তা ঠাসাঠাসি হয়ে যায় ভিড়ে। বেলা ১১টার পর থেকে রাজধানীতে অটোরিকশা বাড়তে থাকে। প্রধান সড়কগুলো ছিল মূলত রিকশাচালকদের দখলে। বাস না চলার সুযোগে অটোরিকশা ও রিকশাচালকেরা অতিরিক্ত ভাড়া নেন অসহায় যাত্রীদের কাছ থেকে। প্রচুর লোকজনকে হেঁটে গন্তব্যে যেতে দেখা গেছে।সাধারণত সায়েদাবাদ-যাত্রাবাড়ী এলাকায় অনেক বাস থাকলেও গতকাল ছিল ভিন্ন চিত্র। বাসের আশায় শত শত মানুষ রাস্তায় দাঁড়িয়ে ছিলেন। দুপুরে সায়েদাবাদের বাস কাউন্টারগুলোর সামনে দেখা গেছে, দু-একটি ছাড়া সব বাসের কাউন্টার বন্ধ।মহাখালী বাসস্ট্যান্ডে কোনো বাস ঢোকেনি, বেরোয়ওনি। বৃহত্তর ময়মনসিংহের প্রতিটি জেলা এবং উত্তরাঞ্চলের কয়েকটি জেলা মিলিয়ে ১৮টি জেলায় বাস চলে এখান থেকে। আগাম কোনো ঘোষণা ছাড়া বাস বন্ধ করে দেওয়ায় এসব জেলামুখী মানুষ পড়েন বিপদে।গুলিস্তান থেকে ধামরাইগামী বাসগুলোও বন্ধ ছিল। বিরোধী দলের হরতাল ও অবরোধে নগরে বিআরটিসি বাস চলাচল করতে দেখা গেলেও গতকাল তাও চলেনি। গাবতলী-উত্তরা ও আবদুল্লাহপুরগামী ডাবল ডেকারের বাসগুলোও গাবতলী ডিপোতে পার্ক করে রাখা হয়েছে।তবে পরিবহনশূন্য রাজধানীতে বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের সরকারি ও ব্যক্তিগত গাড়িও মালিকবিহীন অবস্থায় যাত্রী পরিবহন করতে দেখা গেছে। সবচেয়ে বেশি ভুগেছেন ঢাকা ছেড়ে যাওয়ার উদ্দেশ্যে বিভিন্ন টার্মিনালে যাওয়া যাত্রীরা। পরিবার-পরিজন, সঙ্গে ব্যাগ ও তল্পিতল্পা নিয়ে এসব যাত্রীর ভোগান্তির সীমা ছিল না।খিলগাঁও তালতলায় রাখা একটি পরিবহনের একজন চালক রকিব উদ্দিন জানান, রোববারে কর্মসূচির জন্য বিএনপি জোর করে গাড়ি ভাড়া নিতে চেয়েছে। অন্যদিকে নির্বাচন উপলক্ষে আওয়ামী লীগের লোকজন গাড়ি চায়। রকিব উদ্দিন বলেন, ‘এই দুই দলের একটারে গাড়ি দিলেই অন্য দল গাড়ি ভাইঙ্গা আগুন দিব। তাই মালিকও ভয়ে আছে। গাড়িও নষ্ট বইলা ইঞ্জিন খুইলা রাখছে।’
সাবেক উপসচিব ও লেখক এ জেড এম নাসিমুজ্জামান (৬৫) গত বৃহস্পতিবার ভোরে ভারতের একটি হাসপাতালে ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। তিনি স্ত্রী, দুই মেয়ে ও এক ছেলে রেখে গেছেন। কাল পাবনার বনওয়ারী নগরে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁর মরদেহ দাফন করা হবে। বিজ্ঞপ্তি।বান্দরবানে বিদ্যালয়বিহীন দুর্গম এলাকার আদিবাসী শিশুদের প্রাথমিক শিক্ষার আওতায় আনার জন্য নির্মিত পাঁচটি ছাত্রাবাস চালু না হওয়ায় পরিত্যক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছে। প্রায় ৫০০ ছাত্রছাত্রীর আবাসন সুবিধার ছাত্রাবাসগুলো পরিচালনার জন্য বাজেট বরাদ্দ প্রদানসহ সরকার আগ্রহী না হওয়ায় চালু করা যাচ্ছে না বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানিয়েছে।জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান বলেছেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিলম্বের কারণে জেলা পরিষদ থেকে আগামী জানুয়ারিতে ছাত্রাবাসগুলো চালু করার উদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে ছাত্রাবাসগুলো কেন্দ্রীয় সরকার অধিভুক্ত না হলে পরিষদের পক্ষে স্থায়ীভাবে পরিচালনা করা কঠিন হয়ে দাঁড়াবে। প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জেলা পরিষদে লেখা একটি চিঠিতে প্রাথমিক শিক্ষা হস্তান্তরিত বিভাগ হিসেবে ছাত্রাবাসগুলো জেলা পরিষদকে পরিচালনা করতে বলা হয়েছে। জেলা সহকারী প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ফিরোজ আহমদ বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি দ্বিতীয় পর্যায়ে (পিইডিপি-২) প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে ছাত্রাবাসগুলোর ২০১২ সালে নির্মাণ শেষ হয়েছে। কিন্তু পিইডিপি-৩-এ ছাত্রাবাসগুলো অন্তর্ভুক্ত না হওয়ায় এখনো চালু করা সম্ভব হয়নি।থানচি, রুমা, রোয়াংছড়ি, লামার চাম্বি ও বান্দরবান সদর উপজেলায় নির্মিত ছাত্রাবাসগুলোতে গিয়ে দেখা যায়, মনোরম ভবনগুলোতে সৌরবিদ্যুতের ব্যবস্থা, পানি সরবরাহ, আসবাবসহ প্রয়োজনীয় সবকিছু প্রস্তুত রয়েছে। নির্মাণকারী স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) প্রকৌশলীরা বলেছেন, শিশুদের পড়াশোনার আধুনিক সব সরঞ্জাম সরবরাহ শেষে ছাত্রাবাসগুলো প্রাথমিক শিক্ষা বিভাগকে হস্তান্তর করা হয়েছে।জেলা পরিষদের একটি সূত্র জানিয়েছে, যোগাযোগবিচ্ছিন্ন দুর্গম এলাকায় প্রাথমিক শিক্ষার আওতার বাইরে থাকা হাজার হাজার আদিবাসী শিশুর জন্য ছাত্রাবাসগুলো চালু করা জরুরি। এ জন্য জেলা পরিষদ থেকে কয়েকবার প্রাথমিক শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে চিঠি দেওয়া হলেও মন্ত্রণালয় কোনো আগ্রহ দেখায়নি।জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যশৈহ্লা মারমা বলেন, প্রাথমিক শিক্ষা জেলা পরিষদে ন্যস্ত হলেও বাজেট বরাদ্দ সবকিছু মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া হয়। ছাত্রাবাসগুলোর বাজেটও মন্ত্রণালয় থেকে দেওয়া না হলে জেলা পরিষদের পক্ষে পরিচালনা করা কঠিন হবে। কিন্তু দুর্গম এলাকার শিশুদের শিক্ষার আওতার বাইরে রাখা যাচ্ছে না। এ জন্য মন্ত্রণালয়ের অধিভুক্ত না হওয়া পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য জানুয়ারি থেকে পরিষদের উদ্যোগে চালু করার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান।বাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, সংঘাতময় অবস্থা থেকে দেশ ও দেশবাসীকে রক্ষা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই একচ্ছত্র নির্বাহী ক্ষমতা ত্যাগ করতে হবে। বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের পথ বের করতে হবে। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।খন্দকার মাহবুব অভিযোগ করেন, সরকার একদলীয় শাসন কায়েমের জন্য তাদের দলীয় সরকারের অধীনে প্রহসনের নির্বাচনের চেষ্টা করছে। তাদের এই নীলনকশার নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য বিরোধী দলসহ সুশীল সমাজ প্রতিবাদমুখর। সরকার তা দমিয়ে রাখার অপচেষ্টা করছে। ফলে দেশে এক সংঘাতময় অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।সারা দেশের মতো চট্টগ্রাম থেকেও ঢাকা অভিমুখে যানবাহন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে গতকাল শনিবার খুব সীমিত পরিমাণে কিছু আন্তজেলা বাস চলাচল করেছে।বিরোধী দলের ঢাকা অভিমুখে যাত্রা ঠেকানোর এ কৌশলে দুর্ভোগে পড়তে হয়েছে সাধারণ যাত্রীদের। গত বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মোটরচালক লীগ শনিবার সকাল থেকে সারা দেশে ৩৬ ঘণ্টা হরতাল ডেকেছে। গ্রিন লাইন পরিবহনের দামপাড়া কাউন্টারের বিক্রয় কর্মকর্তা অর্ণব কুন্ডু জানান, চট্টগ্রাম মোটরচালক লীগের ডাকা ৩৬ ঘণ্টা হরতালের কারণে তাঁদের বাস চলাচল বন্ধ রয়েছে।
চট্টগ্রাম নগরের নাসিরাবাদ সরকারি বালক উচ্চবিদ্যালয়ের ভেতরে গতকাল শুক্রবার সকালে নিয়মবহির্ভূতভাবে একটি কোচিং সেন্টারের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টেস্ট পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। এ সময় পরীক্ষার্থীদের ছবি তোলার সময় প্রথম আলোর আলোকচিত্রী জুয়েল শীলকে বাধা দিয়েছেন সেন্টারের পরিচালক সোহেল, তাঁর ভাই মামুন এবং চট্টগ্রাম মহানগর যুবলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিনের অনুসারী যুবলীগের সদস্য রসুল ইসলাম। তাঁরা সকাল সোয়া ১০টা থেকে বেলা সোয়া ১১টা পর্যন্ত স্কুলের ভেতরে আটকে রাখে জুয়েলকে। পরে প্রথম আলোর চট্টগ্রাম কার্যালয়ের দুজন সাংবাদিক গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করেন।গতকাল সকাল সাড়ে নয়টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত বিদ্যালয়ে ইউসিসি নামে একটি কোচিং সেন্টারের বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির টেস্ট পরীক্ষা চলছিল। প্রায় দেড় হাজার শিক্ষার্থী এ পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন বলে জানা গেছে।এ ব্যাপারে মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) আঞ্চলিক উপপরিচালক মোহাম্মদ আজিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘সরকারি স্কুলে কোচিং সেন্টারের পরীক্ষা নেওয়ার অনুমতি দেওয়ার কোনো সুযোগ আছে বলে জানা নেই। মন্ত্রণালয়ের এ রকম কোনো নির্দেশনা নেই। সরকার যেখানে কোচিং-বাণিজ্য বাদ দিয়ে ছেলেমেয়েদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানমুখী করার তাগিদ দিচ্ছে, সেখানে এ ধরনের কর্মকাণ্ড মন্ত্রণালয়ের বিরুদ্ধে কাজ করা হয়। আগামী রোববার এ ব্যাপারে বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কাছে লিখিত ব্যাখ্যা চাইব। দোষী ব্যক্তির বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে সুপারিশ জানাব।’ওই বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেবব্রত দাশ মুঠোফোনে বলেন, ‘ইউসিসি কোচিং সেন্টারের মালিক সোহেল আমার পুরোনো ছাত্র। সেই হিসেবে তাঁর মৌখিক অনুরোধে আধা ঘণ্টার জন্য বিদ্যালয় ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছিলাম। কিন্তু তাঁর প্রতিষ্ঠানের পরীক্ষার জন্য সে অতিরিক্ত সময় ব্যবহার করায় তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে তিরস্কার করেছি।’আলোকচিত্রী জুয়েল বলেন, ‘গতকাল সকালে স্কুলের ক্লাসরুমে পরীক্ষার্থীদের ছবি তুলতে গেলে কোচিং সেন্টারের পরিচালক সোহেল আমাকে ডেকে পাঠান। আমার পরিচয় জানার পরেও তিনি আমাকে ছবি তুলতে না দিয়ে সেখানে অবস্থান করতে বলেন। এরপর তাঁর ভাই মামুন আমাকে ক্যামেরার মেমোরি কার্ড বের করতে এবং স্কুলের বাইরে তোলা ছবি ডিলিট করতে চাপ দেন। মামুন বলেন, “এখনি এগুলো ডিলিট কর, না হলে তোর চাকরি কেউ বাঁচাতে পারবে না।” এর কিছুক্ষণ পরে রসুল আমাকে স্কুলের মাঠের এক কোনায় নিয়ে ছবি তুলতে নিষেধ করে বলেন, “তোর মতো অনেক সাংবাদিককে মেরে ফেলেছি। বাড়াবাড়ি করবি না। তোকে এখানেই হজম করে ফেলব”।’তবে হুমকি দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে রসুল ইসলাম বলেন, ‘আমি এ ধরনের কথা বলিনি।’মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, ‘রসুল নামের কাউকে আমি চিনি না। সে এমনিতেই একটি অপরাধ করেছে, তার ওপর আমার নাম ভাঙিয়ে আরেকটি অপরাধ করল।’ফেনীর সোনাগাজী উপজেলার চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ভূঞার হাটের পাশে চৌরাস্তা এলাকায় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে গত রোববার রাতে দুই দল জলদস্যুর মধ্যে বন্দুকযুদ্ধ হয়। এতে দুজন গুলিবিদ্ধসহ অন্তত আটজন আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে।এলাকাবাসী জানান, স্থানীয় আধিপত্য বিস্তারকে কেন্দ্র করে জলদস্যু কালাম বাহিনীর সঙ্গে জলদস্যু আফছার বাহিনীর বেশ কিছুদিন ধরে বিরোধ চলে আসছিল। জলদস্যু সর্দার সন্দিপী মানিক বছর খানেক আগে প্রতিপক্ষের হাতে নিহত হলে ওই বাহিনীকে পুনরায় সংগঠিত করেন তাঁর ভাগনে কালাম। অপর দিকে জলদস্যু মিন্টু বাহিনীর প্রধান কয়েক মাস আগে র‌্যাবের সঙ্গে ক্রসফায়ারে নিহত হলে তাঁর বাহিনীর সদস্যদের সংগঠিত করেন আফছার। নাম প্রকাশ না করে কয়েকজন এলাকাবাসী জানান, বর্তমানে সোনাগাজীর চর চান্দিয়া ও চর দরবেশ ইউনিয়নের চরাঞ্চলে জলদস্যুদের বিভিন্ন বাহিনী সক্রিয় হয়ে উঠেছে। এরা এলাকায় কালাম বাহিনী ও আফছার বাহিনী হিসেবে পরিচিত। গত রোববার রাত সাড়ে নয়টার দিকে এলাকার আধিপত্য নিয়ে কালাম বাহিনী ও আফছার বাহিনীর মধ্যে চরচান্দিয়া ইউনিয়নের ভূঞার হাটের পাশে চৌরাস্তা এলাকায় বন্দুকযুদ্ধ হয়। এ সময় উভয় পক্ষের মধ্যে অন্তত ৩০-৩৫টি গুলিবিনিময় এবং বেশ কিছু ককটেল বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এতে উভয় পক্ষের অন্তত আটজন আহত হয়েছেন। তাদের মধ্যে কালাম বাহিনীর সদস্য আবদুল হালিম (২৮) ও আফছার বাহিনীর সদস্য মো. হাসান (৩২) গুলিবিদ্ধ হন। সোনাগাজী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সুভাষ চন্দ্র পাল বলেন, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে জলদস্যুদের বন্দুকযুদ্ধ সম্পর্কে তিনি কিছুই জানেন না।আফসানা সুমি ও রেশমী আক্তার দুজনের বয়সই ১০ বছর। ভিন্ন ভিন্ন সময়ে চট্টগ্রামে পাচারকারীর খপ্পরে পড়েছিল তারা। মাস খানেক আগে পাচারকারীদের কাছ থেকে পুলিশ তাদের উদ্ধার করে পাঠিয়ে দেয় কক্সবাজারে অবস্থিত বেসরকারি সংস্থা ইপশার আশ্রয়কেন্দ্র শান্ত নিলয়ে।সুমির বাড়ি কুড়িগ্রাম আর রেশমীর বাড়ি কক্সবাজারের চকরিয়ায়। তাদের দেওয়া ঠিকানায় অনুসন্ধান চালিয়েও পরিবারের খোঁজ পাননি ইপসার কর্মকর্তারা। বাবা-মায়ের কাছে ফেরার জন্য ব্যাকুল হয়ে অপেক্ষা করছে দুই কিশোরী।গত ২০ নভেম্বর বিকেলে শান্ত নিলয়ে গিয়ে দেখা গেছে, রেশমী ও সুমি মেঝেতে বসে লেখাপড়া করছে। কেন্দ্রের তদারককারী (হাউস মাদার) নাজমা আকতার তাদের পড়াচ্ছেন। পরিবারের কথা তুলতেই দুজনের চোখে নেমে আসে জল। ধরা গলায় সুমি বলতে থাকে, ‘আম্মুর জন্য সব সময় মন খারাপ করে। কিন্তু আম্মু কোথায় জানি না। বাবার ঠিকানাও জানা নেই। তাই বাড়ি যেতে পারছি না।’রেশমীর অনুরোধ, তাদের ছবি পত্রিকায় ছাপার ব্যবস্থা করা হোক। এতে হয়তো তাদের বাবা-মায়ের চোখে পড়লেও পড়তে পারে।সুমির দেওয়া তথ্যানুযায়ী তার বাড়ি কুড়িগ্রামের বুড়িবাজারে। বাবা আনসার পেশায় রিকশাচালক। মায়ের নাম সাজিয়া। এক ভাই দুই বোনের মধ্যে সুমি বড়। টিনের ছাউনি দেওয়া বেড়ার ঘরে থাকে ওরা। ছয় মাস আগে সুমিকে নিয়ে তার মা চট্টগ্রামের হালিশহরে আসেন। সেখানে এক বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করার জন্য রেখে যান তাকে। গত ২৯ সেপ্টেম্বর রাত ১০টার দিকে মোবাইল চুরির অভিযোগ তুলে গৃহকর্ত্রী সুমিকে মারধর করে ঘর থেকে বের করে দেয়। ব্যস্ত শহরের রাস্তায় হেঁটে হেঁটে কান্নাকাটি করছিল সে। এ সময় সে এক পাচারকারীর খপ্পরে পড়ে। পাচারকারীর হাত থেকে সেদিনই পাহাড়তলী থানার পুলিশ সুমিকে উদ্ধার করে এবং পরদিন তাকে কক্সবাজারের শান্ত নিলয়ে পাঠিয়ে দেয়।একইভাবে মা ও ভাবির সঙ্গে চট্টগ্রাম থেকে চকরিয়ায় ফেরার পথে হারিয়ে যায় রেশমী আকতার। গত ১৮ আগস্ট রাতে পাঁচলাইশ থানার পুলিশ পাচারকারীর খপ্পর থেকে তাকে উদ্ধার করে শান্ত নিলয়ে পাঠায়।রেশমীর বাড়ি চকরিয়া পৌরসভার চিরিঙ্গা এলাকায়। তার বাবার নাম আনু মিয়া, মা পুতনি।ইপসার কক্সবাজার প্রকল্প ব্যবস্থাপক মো. সিরাজ উদ্দিন বলেন, ‘পুলিশ এবং সুমি ও রেশমির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী আমরা চকরিয়া, চট্টগ্রামের হালিশহর ও কুড়িগ্রামে খোঁজ নিয়েও দুই পরিবারের সন্ধান পাচ্ছি না। যত দিন পরিবারের সন্ধান না মিলবে তত দিন সুমি-রেশমি এখানেই থাকবে। নিজের সন্তানের মতো করে আমরা তাদের মানুষ করব।’হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ আহমদ শফী বলেছেন, দেশে বর্তমানে যে অবস্থা বিরাজ করছে, তাতে আলেম-ওলামা থেকে শুরু করে দেশের কোনো নাগরিকই চুপ করে বসে থাকতে পারে না। তিনি এই ভয়াবহ সংকট থেকে উত্তরণে যার যার অবস্থান থেকে দায়িত্বশীল ও কার্যকর ভূমিকা রাখার আহ্বান জানিয়েছেন।বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ‘গণতন্ত্রের অভিযাত্রা’ কর্মসূচির আগমুহূর্তে গতকাল শনিবার সন্ধ্যায় দেশবাসীর উদ্দেশে গণমাধ্যমে পাঠানো এক খোলা চিঠিতে আহমদ শফী এ আহ্বান জানান।‘দেশ ও ইমান রক্ষায় এগিয়ে আসুন’ শিরোনামের এই খোলা চিঠিতে বিরোধী দলের কর্মসূচির বিষয়ে সরাসরি কিছু বলা হয়নি। তবে এ কথা বলা হয়, দেশে আজ চরম অশান্তি ও অস্বস্তিকর পরিস্থিতি বিরাজ করছে। মানুষের জানমালের সামান্যতম নিরাপত্তা নেই। রাস্তায় বের হয়ে মানুষ লাশ হয়ে বাড়ি ফিরছে। রাজপথে বোমা, পেট্রলবোমায় মানুষ পুড়ছে। নির্বিচারে গাড়ি ভাঙচুর ও জাতীয় সম্পদের ক্ষতিসাধন করা হচ্ছে। নাশকতা প্রতিরোধের নামে পুলিশ, র্যাব, বিজিবি নির্বিচারে গুলি করে পাখির মতো মানুষ মারছে। যৌথ বাহিনীর অভিযানের নামে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী প্রতিবাদী লোকদের গণহারে গ্রেপ্তার করেই ক্ষান্ত হচ্ছে না, তাদের বাড়িঘরেও ধ্বংসযজ্ঞ চালাচ্ছে।হেফাজতের আমির বলেন, নির্বাচনকালীন সরকার নিয়েই দেশের এই সংকট। এ পরিস্থিতির জন্য মূলত আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকারই দায়ী। এই চরম অস্থিতিশীল অবস্থায় দেশকে ইসলামশূন্য করা এবং ইমান-আকিদা ধ্বংস করার দেশি-বিদেশি অপতত্রতা চলছে। এই পরিস্থিতিতে সাধারণ নাগরিক হিসেবে আলেম-ওলামারাও ভীষণভাবে উদ্বিগ্ন ও আতঙ্কিত। চলমান সংকটের সমাধানে এবং দেশের ৯০ ভাগ মানুষের ইমান-আকিদা রক্ষায় যার যার অবস্থানে থেকে এগিয়ে এসে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়।
চলচ্চিত্র কাহিনিকার ও চিত্রনাট্যকার শচীন কুমার নাগ (৫৬) গত বৃহস্পতিবার সকালে পরলোকগমন করেছেন। তিনি স্ত্রী, এক মেয়েসহ অনেক গুণগ্রাহী রেখে গেছেন। তাঁর মৃত্যুতে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র লেখক সমিতি শোক প্রকাশ করেছে। বিজ্ঞপ্তি।নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলার দৌলতপুর কল্লাপাড়া বাজারে মানিক লাল ভৌমিক (৬০) নামে এক মুক্তিযোদ্ধাকে বিএনপি-জামায়াতের কর্মীরা কুপিয়ে আহত করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।গতকাল সোমবার সকাল ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত মানিক লাল ভৌমিককে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেছে।মানিক স্থানীয় দৌলতপুর গ্রামের প্রয়াত প্রসন্ন কুমার ভৌমিকের ছেলে এবং সোনাইমুড়ী উপজেলা পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি।হাসপাতালে আহত মানিক লাল ভৌমিকের পরিবারের সদস্যরা অভিযোগ করেন, সকালে মুক্তিযোদ্ধা মানিক লাল ভৌমিক কল্লাপাড়া বাজারের রাস্তা দিয়ে হেঁটে যাওয়ার সময় হঠাৎ বিএনপি ও জামায়াত-শিবিরের একদল কর্মী অতর্কিতে তাঁর ওপর হামলা চালান। তাঁরা এ সময় ধারালো অস্ত্র দিয়ে মানিক লালকে কুপিয়ে আহত করে রাস্তায় ফেলে চলে যান। এ সময় আশপাশের লোকজন এসে তাঁকে উদ্ধার করে।সোনাইমুড়ী থানার ওসি আবদুস সামাদ বলেন, সকালে পিকেটাররা মানিক লাল ভৌমিকের একটি গাছ কেটে সড়ক অবরোধ করায় তিনি প্রতিবাদ করেছিলেন। হয়তো ওই ঘটনার জের ধরে হামলা হতে পারে। এ ঘটনায় এখনো কোনো লিখিত অভিযোগ পাওয়া যায়নি।ব্যাংক কেলেঙ্কারির ঘটনায় হল-মার্ক গ্রুপের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় পলাতক ১৭ আসামির বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা তামিল হয়নি।গতকাল বুধবার পলাতক আসামিদের গ্রেপ্তারসংক্রান্ত প্রতিবেদন দাখিল করার দিন ধার্য ছিল। পুলিশ এ সংক্রান্ত কোনো প্রতিবেদন দাখিল না করায় আদালত ২২ জানুয়ারি পরবর্তী তারিখ ধার্য করেছেন। ঢাকার জ্যেষ্ঠ বিশেষ জজ মো. জহুরুল হক এই আদেশ দেন। একই আদালতে পৃথক ১১ মামলায় প্রতিষ্ঠানটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক তানভীর মাহমুদ, মহাব্যবস্থাপক তুষার আহমেদ ও সোনালী ব্যাংকের উপমহাব্যবস্থাপক মো. সফিজউদ্দিন আহমদের জামিন আবেদন নাকচ করে দেন।নুরুল ইসলাম ছিলেন সত্, সাহসী ও প্রকৃত সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসী। জনগণের কল্যাণই ছিল তাঁর লক্ষ্য। একমাত্র ছেলেসহ তাঁকে যেভাবে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছে, তা কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে হত্যাকারীদের গ্রেপ্তার ও বিচার করতে হবে।গতকাল শনিবার গণতন্ত্রী পার্টির সভাপতি নুরুল ইসলাম ও তাঁর ছেলে ইসলাম তমোহরের পঞ্চম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত স্মরণসভায় বক্তারা এসব কথা বলেন। নাগরিক কমিটি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের টিএসসিতে এ সভার আয়োজন করে।শিল্প ও গণপূর্তমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেন, এত বড় একজন আদর্শবান মানুষ এভাবে চলে যাবেন, এটা মেনে নেওয়া যায় না।সুষ্ঠু তদন্ত করে দোষী ব্যক্তিদের বিচারের আওতায় আনার আহ্বান জানান ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন। তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য এর সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের বিচার হওয়া দরকার।   সিপিবির সভাপতি মুজাহিদুল ইসলাম সেলিম বলেন, যারা নুরুল ইসলামকে হুমকি দিয়েছিল, তারা বা এ হুমকির সুযোগে অন্য কোনো গোষ্ঠী এ হত্যাকাণ্ড ঘটাতে পারে।মুহম্মদ জাফর ইকবাল  পরিবারের পক্ষ থেকে যেসব সন্দেহভাজনের তালিকা দেওয়া হয়েছিল, তা প্রকাশের দাবি জানান।নুরুল ইসলামের স্ত্রী কবি রুবি রহমান বলেন, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী সুষ্ঠু তদন্তের আশ্বাস দিয়েছিলেন। তার পরও সুষ্ঠু তদন্ত হয়নি। রুবি রহমান বলেন, সিআইডি তড়িঘড়ি তদন্ত শেষ করলে আদালতে নারাজি দেওয়ায় র‌্যাব তদন্তভার নেয়। র‌্যাবের চূড়ান্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, কোনো ক্লু পাওয়া যায়নি। অথচ বাসায় অনেক তথ্য পাওয়া গেছে।খোন্দকার ইব্রাহিম খালেদের সভাপতিত্বে অন্যান্যের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক, ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্রের সাধারণ সম্পাদক ওয়াজেদুল ইসলাম খান প্রমুখ বক্তব্য দেন।
উদ্যাপনের অংশ হিসেবেই কি বাগদানের ঘোষণাটি দিলেন নোভাক জোকোভিচ? এটিপি র‌্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানে যে ১০০ সপ্তাহ হয়ে গেল এই সার্বিয়ানের। তাঁর আগে এই ১০০ সপ্তাহের মাইলফলক ছুঁয়েছেন মাত্র আটজন— আন্দ্রে আগাসি (১০১ সপ্তাহ), রাফায়েল নাদাল (১০২), বিয়র্ন বোর্গ (১০৯), জন ম্যাকেনরো (১৭০), জিমি কনর্স (২৬৮), ইভান লেন্ডল (২৭০), পিট সাম্প্রাস (২৮৬) ও রজার ফেদেরার (৩০২)। ২০১১ সালের ১ জুলাই প্রথম এক নম্বরে ওঠার পর গত বছর মাস তিনেকের জন্য ফেদেরারের কাছে রাজত্ব হারিয়েছিলেন জোকোভিচ। বছর শেষের র‌্যাঙ্কিংয়ে সেটি হারাতে পারেন নাদালের কাছে। আগামী সপ্তাহে নাদাল চীন ওপেনের ফাইনালে উঠলে জোকোভিচ শিরোপা জিতেও তাঁকে আটকাতে পারবেন না।শিরোপা দিয়েই দুর্দান্ত একটা বছর শেষ করলেন সেরেনা উইলিয়ামস। পরশু লি নাকে ২-৬, ৬-৩, ৬-০ গেমে হারিয়ে সেরেনা জিতে নিয়েছেন মৌসুম শেষের টুর্নামেন্ট ডব্লুটিএ চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা। গড়েছেন টুর্নামেন্টের সবচেয়ে বেশি বয়সে শিরোপা জয়ের রেকর্ড। এ বছরে এটা তাঁর ১১তম শিরোপা। বছরে ৭৮ জয়ের বিপরীতে হার মাত্র ৪টি!গত বছর ভিক্টোরিয়া আজারেঙ্কার গড়া এক বছরে সর্বোচ্চ ৭৯ লাখ ২৩ হাজার ৯২০ ডলার আয়ের রেকর্ডটি সেরেনা ভেঙে দিয়েছেন আগেই। ইস্তাম্বুলের এই শিরোপা জিতে এ বছরে প্রাইজমানি থেকে সেরেনার আয় দাঁড়াল এক কোটি ২৩ লাখ ৮৫ হাজার ৫৭২ ডলার! যা পুরুষ-মহিলা মিলিয়েই টেনিস ইতিহাসে এক বছরে তৃতীয় সর্বোচ্চ আয়। ২০১১ ও ২০১২ সালে একমাত্র নোভাক জোকোভিচই তাঁর চেয়ে বেশি আয় করেছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই ২০১৩ সালটাকেই মনে করা হচ্ছে তাঁর ক্যারিয়ারের সেরা। কিন্তু সেরেনা তা মানতে চাইলেন না, ‘আমি গ্র্যান্ড স্লাম জিততে ভালোবাসি। ডব্লুটিএ চ্যাম্পিয়নশিপ জিতেও আমি রোমাঞ্চিত। তবে আমি বলব, এ মৌসুমটা আমার শীর্ষ তিনের একটি।’ শুধু তাই নয়, ৩২ বছর বয়সী সেরেনার ভবিষ্যদ্বাণী, ২০১৪ সালটি তাঁর আরও ভালো যাবে!এদিকে অনেক চেষ্টার পর অবশেষে একটা টুর্নামেন্টের ফাইনালে উঠেছিলেন রজার ফেদেরার। কিন্তু ঘরের কোর্টের সুইস ইনডোরে শিরোপাটিও হাতে নিতে পারলেন না। তাঁকে ৭-৬ (৭-৩), ২-৬, ৬-৪ গেমে হারিয়ে শিরোপা জিতেছেন আর্জেন্টিনার হুয়ান মার্টিন দেল পোত্রো। এএফপি।কুড়িগ্রামের উলিপুর উপজেলায় বোরো ধান বীজের সংকট দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের (বিএডিসি) উলিপুর বীজ বিক্রয় কেন্দ্রে বর্তমানে এই বীজের কোনো মজুত নেই। প্রায় প্রতিদিনই ওই কেন্দ্রে বীজ নিতে এসে কৃষকেরা ফিরে যাচ্ছেন।এই সুযোগে বোরো বীজের ডিলার ও খুচরা ব্যবসায়ীরা দাম বাড়িয়ে দিয়েছেন। তাঁরা ১০ কেজি ওজনের বীজ সরকার নির্ধারিত ৩৪০ টাকার পরিবর্তে ৪০০ থেকে ৪৫০ টাকা দরে বিক্রি করছেন।বিএডিসির বীজ বিক্রয় কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত উপসহকারী পরিচালক সোহরাব হোসেন জানান, গত ২৫ অক্টোবর থেকে তিন দফায় ব্রি-২৮ জাতের ধান বীজ ১০ টন, ব্রি-২৯ পাঁচ টন ও হাইব্রিড ৪২০ কেজি বরাদ্দ পাওয়া যায়। তা ১৩ নভেম্বরের মধ্যে শেষ হয়ে গেছে। বীজের জন্য লিখিতভাবে চাহিদা দেওয়া হলেও বিএডিসির বীজ বিপণন কেন্দ্র রংপুর কার্যালয় থেকে জানানো হয়, তাদের দপ্তরে বীজ নেই। সোহরাব হোসেন বলেন, উলিপুরের ১৪ জন ডিলার গত মাসে বিএডিসি রংপুর বীজ বিপণন কেন্দ্র থেকে ব্রি-২৮ জাতের বীজ ৪২ টন, হাইব্রিড আড়াই টন উত্তোলন করেন।বীজের দাম সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি নেওয়ার কথা স্বীকার করে ডিলার আবদুর রশীদ বলেন, বীজ বিক্রয় কেন্দ্র ও ডিলারদের যে পরিমাণ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে, তা দিয়ে মাত্র ৪০ শতাংশ কৃষকের চাহিদা মেটানো সম্ভব।গত রোববার সকালে বীজ বিক্রয় কেন্দ্রে বীজ নিতে এসেছিলেন উলিপুর পৌরসভার হায়াৎ খাঁ গ্রামের কৃষক আবদুর রশীদ, গুনাইগাছ ইউনিয়নের পূর্ব কালুডাঙ্গা গ্রামের কৃষক ফয়জার রহমান, পান্ডুল ইউনিয়নের আপুয়ার খাতা গ্রামের নূর ইসলামসহ আরও অনেকে। তাঁরা বলেন, এক সপ্তাহ ধরে বীজ বিক্রয় কেন্দ্রে বীজের জন্য আসছেন তাঁরা। কিন্তু বীজ না পেয়ে খালি হাতে ফিরতে হচ্ছে তাঁদের। এতে তাঁদের সময় ও অর্থ দুটোই ব্যয় হচ্ছে। কৃষকেরা অভিযোগ করেন, খুচরা বাজারের বীজ বেশি টাকায় বিক্রি হলেও সেগুলো ভেজালে ভরা।যোগাযোগ করা হলে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম বলেন, তাঁর দপ্তরে প্রতিদিন বীজের জন্য কৃষকেরা এসে খোঁজ নিচ্ছেন। বীজ-সংকটের বিষয়টি লিখিতভাবে বিএডিসির বীজ বিপণন কেন্দ্রের রংপুর আঞ্চলিক কার্যালয় ও জেলা বীজ মনিটরিং কমিটিকে জানানো হয়েছে। কিন্তু কোনো কাজ হচ্ছে না।নোয়াখালী সদর উপজেলার পশ্চিম চরমটুয়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডের যুবলীগের সদস্য মনির হোসেন ওরফে কাজলকে (৩৮) পায়ে গুলি করে আহত করেছে সন্ত্রাসীরা।গতকাল শনিবার দুপুরে চরমটুয়া ইউনিয়নের সফিগঞ্জ বাজারের কাছে এ ঘটনা ঘটে। গুরুতর আহত মনির হোসেনকে স্থানীয় লোকজন উদ্ধার করে প্রথমে নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে অবস্থার অবনতি ঘটলে তাঁকে ঢাকার পঙ্গু হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। গুলিবিদ্ধ মনির হোসেন একই ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল আলীর ছেলে।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে সফিগঞ্জ বাজারে লক্ষ্মীপুরের সন্ত্রাসী সোলেমান বাহিনী অতর্কিতে মনির হোসেনের ওপর আক্রমণ চালায়। হামলাকারীরা একপর্যায়ে মনিরকে ধরে বাজারের পার্শ্ববর্তী বাঞ্ছারামপুর প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সামনে নিয়ে তাঁর বাঁ পায়ে গুলি করে সেখানে ফেলে পালিয়ে যায়।নোয়াখালী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আবাসিক চিকিত্সা কর্মকর্তা (আরএমও) ফরিদউদ্দিন চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, গুলিতে মনির হোসেনের বাঁ পায়ের হাঁটুর ওপরের রক্তনালি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
চট্টগ্রামের ফটিকছড়ি উপজেলার ভুজপুর-নাজিরহাট সড়কের বিভিন্ন স্থানে ছোট-বড় অসংখ্য গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। এতে চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে দুই উপজেলার সাধারণ মানুষ।সম্প্রতি ১৬ কিলোমিটার দীর্ঘ ওই সড়ক পরিদর্শনে গিয়ে দেখা যায়, সড়কের বিভিন্ন স্থানে পিচের আস্তরণ ও ইটের সুরকি উঠে বড় বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে।স্থানীয় লোকজন বলেন, সড়কটি দিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশা, মাইক্রোবাস, মিনিবাস, বাস ও ট্রাকসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহন চলাচল করে। সড়কের বেহাল দশার অজুহাতে যানবাহনের চালকেরা যাত্রীদের কাছ থেকে দ্বিগুণ ভাড়া আদায় করছেন। সুয়াবিল ইউনিয়নের বাসিন্দা কাজী মো. নিজাম উদ্দিন বলেন, সড়কের অবস্থা খুবই খারাপ। এই সড়ক দিয়ে চলাচলের সময় দুর্ভোগ তো পোহাতেই হয়, তার ওপর দ্বিগুণ ভাড়া গুনতে হয়।ফয়জুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি বলেন, এই সড়ক দিয়ে রোগীদের চট্টগ্রাম নগরের হাসপাতালে কিংবা ফটিকছড়ি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে আনা-নেওয়ার সময় তারা আরও অসুস্থ হয়ে পড়ে। সড়কে চলা একাধিক অটোরিকশার চালক বলেন, বড় বড় গর্তের কারণে প্রতিদিনই কোনো না কোনো গাড়ির যন্ত্রাংশ নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সুয়াবিল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান আবু তালেব চৌধুরী বলেন, সড়কটি দিয়ে চট্টগ্রামের হাটহাজারী উপজেলার নাজিরহাট, মন্দাকিনী ও ফরহাদাবাদ এবং ফটিকছড়ি উপজেলার সুয়াবিল, হারুয়ালছড়ি, ভুজপুর, নারায়ণহাট, মির্জারহাট ও হেয়াঁকো এলাকার লক্ষাধিক মানুষ যাতায়াত করে থাকে। স্থানীয় লোকজন বলেন, গত বছর বন্যায় সড়কটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এরপর সড়কটি আর সংস্কার করা হয়নি। এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শচী দুলাল বিশ্বাস বলেন, ‘সড়কটির কার্পেটিং উঠে ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। সড়কটি সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে চাহিদাপত্র পাঠানো হয়েছে।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. নজরুল ইসলাম বলেন, ‘সড়কটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বন্যায় ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পর ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা পরিদর্শনে এসে সড়কটি দ্রুত সংস্কারের আশ্বাস দিয়েছেন। আশা করি, শিগগিরই সড়কটির সংস্কারকাজ শুরু হবে।’চট্টগ্রাম নগরের আসকারদীঘির পাড়ে পুড়ে যাওয়া ফার্নিচার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা গতকাল সোমবার ধ্বংসস্তূপ সরাতে ব্যস্ত ছিলেন। তাঁদের পাশাপাশি দুশ্চিন্তায় পড়েছেন এসব দোকানে কার্যাদেশ দিয়ে অগ্রিম টাকা দেওয়া ক্রেতারা। অনেক ক্রেতা গতকাল দোকানিদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন বলে জানা গেছে। তাঁরা ব্যবসায়ীদের সহমর্মিতা জানানোর পাশাপাশি পছন্দের ফার্নিচারটি আর তৈরি করা সম্ভব হবে কি না জানতে চেয়েছেন।লুসাই ফার্নিচারের মালিক নাছির উদ্দিন বলেন, ‘এখন আমরা আপাতত পরিষ্কার করে কোনোরকমে টিন দিয়ে কিছু করার চিন্তাভাবনা করছি। আমাদের প্রত্যেক দোকানদারের কোটি কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে।’ব্যবসায়ীদের মতে, রোববারের অগ্নিকাণ্ডে অন্তত ২৫ কোটি টাকা ক্ষতি হয়েছে। আগুনে ১৩টি দোকান পুড়ে যাওয়ার পাশাপাশি ৩২টি বস্তিঘরও পুড়ে গেছে। ক্ষতিগ্রস্তদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আজ-কালের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের অর্থ ও চাল দিয়ে সহযোগিতা করা হবে বলে জানা গেছে।জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ কর্মকর্তা মো. আবদুল মালেক বলেন, ক্ষতিগ্রস্ত বস্তিবাসীদের প্রত্যেককে নগদ দুই হাজার টাকা ও ৩০ কেজি চাল দেওয়া হবে। স্থানীয় সাংসদ নুরুল ইসলাম বিএসসি তাঁদের মধ্যে আজ-কালের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করবেন।দিনাজপুরের পার্বতীপুরে মধ্যপাড়া পাথরখনি শ্রমিকেরা পাঁচ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে গতকাল বুধবার তৃতীয় দিনের মতো ধর্মঘট অব্যাহত রেখেছেন। তিন দিনের শ্রমিক ধর্মঘটের ফলে পাথর উত্তোলন বন্ধ থাকায় প্রায় ৩০ লাখ টাকা লোকসান হয়েছে।খনি সূত্র জানায়, ছাঁটাই করা শ্রমিকদের চাকরিতে পুনর্বহাল, সরকার ঘোষিত ২০ ভাগ মহার্ঘ ভাতা, সরাসরি কোম্পানির অধীনে চাকরি প্রদান, ডিপ্লোমাধারী শ্রমিকদের চাকরি নিয়মিতকরণ ও শ্রমিক ছাঁটাই বন্ধ করা—এই পাঁচ দফা দাবিতে খনির ৩০৮ জন শ্রমিক গত সোমবার সকাল থেকে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘট শুরু করেন। এঁরা সবাই তৃতীয় পক্ষের মাধ্যমে নিয়োগ পাওয়া।মধ্যপাড়া গ্রানাইট মাইনিং কোম্পানি লিমিটেডের (এমজিএমসিএল) ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. মঈন উদ্দিন জানান, ডিসেম্বর মাস থেকে খনির ব্যবস্থাপনা, পরিচালন, উৎপাদন ও রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব পালন করবে বেলারুশের ট্রেস্ট সকটোসট্রয় এবং ‘জার্মানিয়া ট্রেস্ট কনসোর্টিয়াম (জিটিসি)’। সোমবার থেকে জিটিসির কাছে খনি হস্তান্তরের প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে। এ সময় শ্রমিক অসন্তোষ দেখা দেওয়ায় খনি হস্তান্তরকাজ বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের (পবা) চেয়ারম্যান আবু নাসের খান বলেছেন, সাম্প্রতিক রাজনৈতিক সহিংসতায় যত গাছ ধ্বংস করা হয়েছে, তার ক্ষতি পুষিয়ে উঠতে ২০ থেকে ৩০ বছর সময় লাগবে। গতকাল শনিবার বিকেলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদের সামনে পরিবেশবিধ্বংসী রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড বন্ধের দাবিতে সংগঠনটি আয়োজিত এক সমাবেশে তিনি এ কথা বলেন।আবু নাসের খান বলেন, অবরোধের নামে মহাসড়ক, আঞ্চলিক সড়ক, জেলা, উপজেলা ও গ্রামীণ সড়কে পর্যন্ত যেভাবে গাছ কাটা হয়েছে, তাকে নিষ্ঠুরতা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না।
লক্ষ্মীপুরের রামগতি উপজেলার চর আলেকজান্ডার ইউনিয়নের বালুরচর ওয়াপদা বাজার এলাকায় গতকাল শুক্রবার দুপুরে ইউনিয়ন ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। এ সময় ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতির বসতবাড়িসহ বিএনপি-সমর্থকদের দুটি দোকান ও সাতটি বসতঘরে হামলা, ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। সংঘর্ষে আট নারীসহ উভয় পক্ষে ২০ জন আহত হয়।এলাকাবাসী জানান, গত বুধবার স্থানীয় বালুরচর উচ্চবিদ্যালয়ে ছাত্রলীগ ও ছাত্রদলের সমর্থকদের মধ্যে এক সংঘর্ষের ঘটনায় বিএনপি ও ছাত্রদলের কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দেওয়া হলে তার জের ধরে গতকালের ওই সংঘর্ষ বাধে।স্থানীয় চর আলেকজান্ডার ইউনিয়ন ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. আক্তার দাবি করেন, বুধবার বালুরচর উচ্চবিদ্যালয়ে ছাত্রদলের কর্মীরা ছাত্রলীগের কর্মী মো. মনিরকে মারধর করেন।ওই ঘটনায় বৃহস্পতিবার রামগতি থানায় মামলা হয়। এর জের ধরে ছাত্রদল ও বিএনপির কর্মীরা গতকাল শুক্রবার সকালে ছাত্রলীগের কর্মী মো. রাশেদকে ওয়াপদা বাজারে মারধর করেন এবং দুপুরে বালুরচর এলাকায় ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি মো. আকবর হোসেন ও তাঁর ভাই মো. আক্তারসহ আবুল কালাম, আনোয়ার হোসেন ও নুরুল ইসলামকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে জখম করেন।চর আলেকজান্ডার ইউনিয়ন ছাত্রদলের সভাপতি মো. হান্নান ছাত্রলীগের কর্মীদের মারধরের কথা অস্বীকার করে দাবি করেন, বুধবারের ঘটনার জের ধরে গতকাল দুপুরে ছাত্রলীগের কর্মীরা ওয়াপদা বাজারে বিএনপি-সমর্থক আকবর হোসেনের দোকান ভাঙচুর ও লুট করেন এবং তাঁর (হান্নানের) পিতা মো. আবদুল বারেককে পিটিয়ে আহত করেন।পরে তাঁরা বালুরচর এলাকায় তাঁর বসতবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর ও লুটপাট করেন। ওই সময় তাঁর চাচা, ভাই ও ভগ্নিপতির ছয়টি বসতঘর এবং একটি দোকানেও ভাঙচুর ও লুটপাট করা হয়। হামলাকারীরা তাঁর মা বিবি সাকেনা, ভাবি জিন্নাত নাহার, বিউটি আক্তার, বোন নিরু বিবি, ইয়াছমিন আক্তার, রওশন আক্তার, ভাতিজি নুরুন্নাহার, প্রতিবন্ধী ভাই মো. জসীম উদ্দিন, মো. বাবুল, মিরাজ উদ্দিন, ভাগনে নবীর হোসেন ও আহাদ হোসেনকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে আহত করে। তাঁদের উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়েছে।রামগতি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আক্তার হোসেন সন্ধ্যায় প্রথম আলোকে বলেন, পুলিশ এলাকায় টহল দিচ্ছে, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।বান্দরবানে জেলা যুবদলের দুই পক্ষের পাল্টাপাল্টি মামলায় গতকাল সোমবার আদালত উভয় পক্ষের নয়জনের জামিন নামঞ্জুর করে জেলহাজতে পাঠানোর আদেশ দিয়েছেন। তাঁদের মধ্যে মাবুদ পক্ষের প্রধান আবদুল মাবুদ ও মিটন পক্ষের প্রধান মশিউর রহমান মিটনও রয়েছেন।বিএনপির নেতা-কর্মীরা জানিয়েছেন, যুবদলের বিবদমান মাবুদ পক্ষ ও মিটন পক্ষ গত শুক্রবার জেলা বিএনপির সমাবেশ চলাকালে হামলা ও পাল্টা হামলা চালিয়েছে। এ ঘটনায় বান্দরবান সদর থানায় উভয় পক্ষ একে অপরের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করলে পুলিশ তাদের খুঁজতে থাকে। উভয় পক্ষ আইনজীবীর মাধ্যমে জামিন নিতে জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম সালামত উল্লাহর আদালতে হাজির হয়।আদালত সূত্রে জানা যায়, মিটনের পক্ষ ২৬ জনের বিরুদ্ধে এবং মাবুদের পক্ষ ২৭ জনের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় অধিকাংশ আসামি আদালতে হাজির ছিলেন। যাঁদের জামিনযোগ্য ধারায় আসামি করা হয়েছিল, আদালত তাঁদের জামিনের আদেশ দিয়েছেন। কিন্তু মাবুদ পক্ষের আবদুল মাবুদ, আবু বক্কর, শাহাদাৎ হোসেন, সেলিম রেজা, আবু সালেহ, সিরাজুল ইসলাম ও গোলাম সারোয়ার এবং মিটন পক্ষে মশিউর রহমান মিটন ও জহির উদ্দিন মাছুমের জামিন নামঞ্জুর করেন বিজ্ঞ বিচারিক হাকিম।যুবদলের আদিবাসীবিষয়ক কেন্দ্রীয় সম্পাদক মং শৈ ম্রাই বলেছেন, জেলা যুবদলের সভাপতির পদ থেকে মশিউর রহমান মিটনকে বহিষ্কারের জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিষয়টি কেন্দ্রীয় কমিটিকেও প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য জানানো হয়েছে। বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠনগুলোতে তাঁর বিভাজন সৃষ্টির বিষয়টিও যুবদল ও বিএনপির ঊর্ধ্বতন মহলের সবাইকে জানানো হয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন।জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদের ডিগবাজিতে ক্ষুব্ধ হয়ে দলের কয়েকজন নেতা ‘তৃণমূল জাতীয় পার্টি’ নামে নতুন দল গঠন করেছেন। গতকাল বুধবার গণমাধ্যমে বিজ্ঞপ্তি পাঠিয়ে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জাপার সাবেক সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য খন্দকার মাহতাব উদ্দিনকে আহ্বায়ক ও জাফরুল হাসান ফরহাদ, কাজী হারুনুর রশীদ, আলী ওসমান খান, সরদার আবদুর রশীদ, মফিজুর রহমান ও মেজর (অব.) মোজাহার উদ্দিনকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং গোলাম রহিমকে সদস্যসচিব ও সামশাদ শাহকে সহকারী সদস্যসচিব বলে উল্লেখ করা হয়।বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করা হয়, ১৫১ সদস্যের তৃণমূল জাতীয় পার্টিতে সাবেক মন্ত্রী, সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য ও বর্তমান সাংসদও আছেন। সময়মতো সংবাদ সম্মেলন করে সবার নাম প্রকাশ করা হবে। এতে আরও বলা হয়, সব দলের অংশগ্রহণে আগামী জাতীয় নির্বাচন চায় তৃণমূল জাতীয় পার্টি। তারা কারও দালাল হবে না, যাতে মানুষ থুতু দেয়।জানতে চাইলে জাপার মহাসচিব এ বি এম রুহুল আমিন হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, খন্দকার মাহতাব উদ্দিন একসময় আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি (জেপি) করতেন, পরে তিনি জাপায় যোগ দেন। দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গ ও অনৈতিক কাজের জন্য তাঁকে অনেক আগেই দল থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয় বলে তিনি দাবি করেন।চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় চিকিত্সাকেন্দ্রে এক শিক্ষার্থীকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ সরবরাহের ঘটনায় জড়িত কর্মচারী বাবুল চন্দ্র শীলকে সাময়িকভাবে বহিষ্কার করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। এ ছাড়া চিকিত্সাকেন্দ্রের প্রধান কর্মকর্তা কাজী মোহাম্মদ সাইফুল্লাকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এ বিষয়ে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশের পাশাপাশি তদন্ত সাপেক্ষে দোষী প্রমাণিত হলে অন্য ব্যক্তিদের বিরুদ্ধেও আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও ঘোষণা দিয়েছে কর্তৃপক্ষ।গতকাল শনিবার বেলা ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্যের দপ্তরে ওষুধ ক্রয় কমিটির এক জরুরি সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভাপতিত্ব করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহ-উপাচার্য ও চিকিত্সাকেন্দ্রের উপদেষ্টা কমিটির সভাপতি অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী। গত শুক্রবার শ্বাসকষ্টজনিত রোগে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থী চিকিত্সাকেন্দ্রে গেলে তাঁকে মেয়াদোত্তীর্ণ ওষুধ দেন বাবুল চন্দ্র। এ নিয়ে গতকাল শনিবার প্রথম আলোতে ‘সব রোগের ওষুধ প্যারাসিটামল, যোগ হলো মেয়াদোত্তীর্ণ! শীর্ষক প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়।
নোয়াখালীর হাতিয়ার নলচিরা লঞ্চঘাট থেকে উপজেলা সদর ওছখালী পর্যন্ত নির্মাণ করা হয়েছে ২০টি বিশাল তোরণ। উপজেলা সদর ওছখালী ছেয়ে গেছে বিশাল বিশাল ডিজিটাল ব্যানারে। উপজেলা পরিষদ ভবন দেখে মনে হচ্ছে, বিয়ে অনুষ্ঠানের জন্য সাজানো কোনো কমিউনিটি সেন্টার।নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সাংসদ (নোয়াখালী-৫) একরামুল করিম চৌধুরী আজ শনিবার হাতিয়ায় আসবেন। তাই হাতিয়ায় এত সব আয়োজন। একরামুল করিম চৌধুরী হাতিয়া উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে উপজেলা আওয়ামী লীগ আয়োজিত জনসভায় ভাষণ দেবেন।একরামুল করিমের হাতিয়া সফরকে কেন্দ্র করে গতকাল শুক্রবার দিনভর উপজেলা পরিষদের সামনের এলাকা, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বর ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যানের বাসার সামনের রাস্তায় চালানো হয় পরিচ্ছন্নতা অভিযান। উপজেলার বিভিন্ন ভবনের দেয়ালে লাগানো হয়েছে অসংখ্য পোস্টার।হাতিয়া উপজেলা বিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের দেয়ালে লাগানো হয়েছে একটি ডিজিটাল ব্যানার। সেখানে লেখা আছে, ‘আমি হাতিয়ার, হাতিয়া আমার।’ ব্যানারে উল্লেখ করা হয়েছে, বক্তব্যটি একরামুল করিম চৌধুরীর।উপজেলা ছাত্রলীগের আহ্বায়ক মহিউদ্দিন প্রথম আলোকে জানান, প্রতিটি তোরণ তৈরিতে ২০ হাজার টাকার বেশি খরচ হয়েছে।উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন আহমেদ বলেন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে একরামুল করিম চৌধুরী হাতিয়া থেকে (নোয়াখালী-৬ আসন) দলের মনোনয়ন চাইবেন।এদিকে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে বোঝা যায়, তাঁদের মধ্যে একধরনের আতঙ্ক বিরাজ করছে। অনেকের মনে প্রশ্ন—শনিবার আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে কোনো সংঘর্ষ হবে না তো?প্রসঙ্গত, হাতিয়ায় আওয়ামী লীগের দুই পক্ষের মধ্যে বিরোধ চলে আসছে। এক পক্ষে আছেন সাবেক সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি মোহাম্মদ আলী এবং হাতিয়া পৌরসভার মেয়র ও পৌর আওয়ামী লীগের যুগ্ম আহ্বায়ক এ কে এম ইউছুফ আলী।অপর পক্ষে আছেন সাবেক সাংসদ ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোহাম্মদ ওয়ালী উল্লাহ এবং উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মহি উদ্দিন আহমেদ। একরামুল করিম চৌধুরী ওয়ালী উল্লাহ ও মহি উদ্দিন আহমেদের পক্ষকে সমর্থন দিচ্ছেন।বিএনপিসহ ১৮ দলের ডাকা টানা ৬০ ঘণ্টার হরতালে কক্সবাজারের টেকনাফে পাইকারি ক্রেতা-সংকটে সবজির দাম পাচ্ছেন না কৃষকেরা। অন্যদিকে পাইকারেরা সস্তা দামে সবজি কিনেও গাড়ির সংকটে পড়েছেন।পাইকারি ব্যবসায়ীরা জানান, উপজেলার হ্নীলা, হোয়াইক্যং ও বাহারছড়া ইউনিয়নের পাহাড়ি এলাকায় জুমচাষের মাধ্যমে সবজি উৎপাদন হয়েছে। উপজেলার অধিকাংশ চাহিদা মিটিয়ে এখান থেকে জেলা সদরে সবজি সরবরাহ করা হয়। হরতালে সবজি সরবরাহ করতে না পারায় এবং ভাপসা গরমের কারণে বেগুন, করলা, বরবটিতে পচন ধরেছে। কৃষকেরা সস্তা দামে বিক্রি করলেও গাড়ির সংকটের কারণে পাইকারেরা তা বাজারে আনতে পারছেন না।বাসস্টেশন এলাকার পাইকার আবদুর রাজ্জাক বলেন, ‘গতকাল সকালে অটোরিকশাযোগে হোয়াইক্যং বাজার থেকে কম দামে সবজি কিনলেও হরতালের কারণে আড়ত পর্যন্ত নিতে গাড়ি পাচ্ছি না। মালিকেরা ঝুঁকি নিয়ে গাড়ি বের করতে দিচ্ছেন না। দু-একটি অটোরিকশা পাওয়া গেলেও ৪০০ টাকার ভাড়ার পরিবর্তে দুই হাজার টাকা দিয়ে টেকনাফে আনা হয়। এ কারণে বেশি দামে সবজি বিক্রি করতে হচ্ছে।’হোয়াইক্যং হাটবাজারে লম্বাঘোনা এলাকার কৃষক রায় মং চাকমা ও হ্নীলা বাজারে পানখালীর কৃষক খোরশেদ আলম বলেন, পাহাড়ি এলাকায় জুমচাষ করে খেত থেকে সবজি তুলে বাজার পর্যন্ত আনতে যে খরচ হয়, বিক্রি করে তা-ও উঠছে না। হরতালের কারণে যা অন্য সময়ের তুলনায় দামও অর্ধেকের চেয়ে কম। টেকনাফ উপজেলার কৃষি কর্মকর্তা মো. আবদুল লতিফ বলেন, উপজেলার তিনটি পাহাড়ি ইউনিয়নে এবার জুমচাষের মাধ্যমে সবজির ভালো ফলন হয়েছে। এখানে কোনো ধরনের হিমাগার না থাকায় সবজি মজুত করতে না পারায় স্থানীয় কৃষকেরা ন্যায্যমূল্য পাচ্ছেন না।ব্রাজিল, রাশিয়া ও তুরস্ককে পেছনে ফেলে দুবাই জয়ী হয়েছে। ওয়ার্ল্ড এক্সপো ২০২০-এর আয়োজক হচ্ছে দুবাই। গতকাল বুধবার প্যারিসে আন্তর্জাতিক প্রদর্শনী ব্যুরোর ১৫৪তম সাধারণ অধিবেশনে ভোটাভুটিতে জয়ী হয় দুবাই। চূড়ান্ত পর্বে রাশিয়ার একাতেরিনবাগকে হারিয়ে আয়োজক হওয়ার গৌরব অর্জন করে আরব আমিরাতের শহর দুবাই। আরব আমিরাতের এই নগর তৃতীয় পর্বে ১১৬ ভোট পায়। অন্যদিকে একাতেরিনবাগ পায় মাত্র ৪৭ ভোট। ভোটদানে কোনো দেশ বিরত ছিল না। ১৬৮ সদস্য দেশের এই সংগঠনের ভোটাভুটি শুরুর ২০ মিনিট আগেই ব্রাজিলের সাও পাওলো এবং তুরস্কের ইজমির প্রার্থিতা প্রত্যাহার করে নেয়। এএফপি।ছেলে হত্যার বিচারের অপেক্ষায় থেকে বাবা মারা গেছেন দুই বছর আগে। মা চলে গেছেন আরও আগে। এখন পরিবারের সদস্যদের আশা, তাঁরা যেন অন্তত হত্যাকাণ্ডের বিচার দেখে যেতে পারেন।এ আশা চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের নিহত জ্যেষ্ঠ সহসভাপতি আলী মর্তুজা চৌধুরীর পরিবারের। ২০০১ সালের ২৯ ডিসেম্বর গ্রামের বাড়ি ফতেয়াবাদের ছড়ারকুল এলাকায় আলী মর্তুজাকে সন্ত্রাসীরা খুন করে। এ হত্যাকাণ্ডের জন্য নিহত আলী মর্তুজার পরিবার ও ছাত্রলীগ ছাত্রশিবিরকে দায়ী করে আসছে।হত্যাকাণ্ডের এক যুগ পেরিয়ে গেলেও বিচারকাজ শেষ না হওয়ায় পরিবারের সদস্য ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের মাঝে ক্ষোভ বিরাজ করছে।২০০৩ সালের অক্টোবরে তত্কালীন বিরোধীদলীয় নেতা ও বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আলী মর্তুজার বাড়িতে যান এবং ক্ষমতায় এলেদ্রুত এ বিচারকাজ শেষ করার আশ্বাস দেন। কিন্তু এখনো বিচারকাজ শেষ হয়নি।হাটহাজারী থানা সূত্র জানায়, হত্যাকাণ্ডের পরদিন আলী মর্তুজার বড় ভাই আলী নাসের চৌধুরী ছয়জনের বিরুদ্ধে হাটহাজারী থানায় মামলা করেন। পুলিশ ২০০৪ সালে আলোচিত এ মামলার অভিযোগপত্র দেয়।আলী মর্তুজার পরিবারের অভিযোগ, তত্কালীন জোট সরকারের মন্ত্রী ও সাংসদদের প্রভাবে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের মধ্যে তিনজনকে রাজনৈতিক বিবেচনায় অভিযোগপত্র থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা হলেন সাইফুল ইসলাম, শিবিরের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার সাবেক সাধারণ সম্পাদক দিদারুল আলম ও সাংগঠনিক সম্পাদক আবদুল আউয়াল।সূত্র জানায়, মামলার প্রধান আসামি হাবিব খান বিদেশে আছেন। অন্য আসামি সাইফুল ইসলাম বর্তমানে একটি বেসরকারি ব্যাংকে কর্মরত। আবদুল আউয়াল নামের একজন বিদেশে পলাতক। আর দিদারুল আলম ঢাকায় ব্যবসা করছেন।মামলার বাদী আলী নাসের চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ‘বর্তমানে বিচারাধীন মামলাটির চার সাক্ষীর সাক্ষ্য গ্রহণ বাকি রয়েছে। আমাদের প্রত্যাশা, দ্রুত বিচার-প্রক্রিয়া শেষ করে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এতে ভাই হারানোর শোক কিছুটা হলেও কাটবে।’এদিকে ছাত্রলীগের বিশ্ববিদ্যালয় শাখার নেতা-কর্মীরা আলী মর্তুজার ১২তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ক্যাম্পাসে দুই দিনের কর্মসূচি ঘোষণা করেছে। কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে মরহুমের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ, কবর জেয়ারত, বিক্ষোভ মিছিল, মিলাদ মাহফিল ও মানববন্ধন।
বরগুনার শিক্ষাবিদ বেলায়েত হোসেনের সপ্তম মৃত্যুবার্ষিকী আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। এ উপলক্ষে সদর উপজেলার খাজুরতলা গ্রামে কোরআনখানি ও মোনাজাতের আয়োজন করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি।কক্সবাজারের উখিয়া উপজেলার রাজাপালং ইউনিয়নের মাছকারিয়া গ্রামের ডোবায় গতকাল সোমবার সকালে ফাঁদ বসিয়ে ১৪টি সাদা বক পাখি ধরেন ওই গ্রামের দুই ব্যক্তি ছৈয়দ আলম (৩৫) ও মো. জলিল (৪০)। তারপর তাঁরা বকগুলো বিক্রি করতে যান উপজেলার কুতুপালং রোহিঙ্গাশিবির বাজারে। শিবিরের ইনচার্জ জালাল উদ্দিন বক বিক্রি করতে দেখে পুলিশ দিয়ে দুই ব্যক্তিকে আটক করেন। তারপর দুজনকে সোপর্দ করেন উখিয়া থানায়।উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা গিয়াস উদ্দিন মিয়া বলেন, গতকাল দুপুরে বকসহ দুজনকে উপজেলা ভ্রাম্যমাণ আদালতে হাজির করা হলে বিচারক ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাইফুল ইসলাম দুজনকে ১০ দিন করে কারাদণ্ড দেন। পরে বকগুলো অবমুক্ত করা হয়।বাংলাদেশ বন্য প্রাণী সংরক্ষণাদেশ, ১৯৭৪-এর ২৬ ধারামতে পাখি শিকারির দুই বছর সাজার বিধান রয়েছে।সুশাসনের জন্য নাগরিকের (সুজন) উখিয়া শাখার সভাপতি নূর মোহাম্মদ সিকদার বলেন, শীত শুরুর আগে উপজেলার বিভিন্ন ডোবা, নালা, খালে সাদা বকসহ অতিথি পাখির বিচরণ দেখা যাচ্ছে। কিন্তু কতিপয় ব্যক্তি প্রতিদিন ফাঁদ বসিয়ে অসংখ্য পাখি শিকার করছে।এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার জন্য সুজনের পক্ষ থেকে ২৪ অক্টোবর ইউএনওসহ বিভিন্ন দপ্তরে স্মারকলিপি দেওয়া হয়।পঞ্চগড়-১ আসনের সাংসদ ও জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. মজাহারুল হক প্রধানের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ উঠেছে। গত মঙ্গলবার মজাহারুল হক সদর উপজেলার কামাতকাজলদীঘি ও বগুলাডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের ফলক উন্মোচন করেন।গত সোমবার সন্ধ্যায় নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করে। কমিশনের সংশোধিত আচরণবিধি ৩-এর ক ধারার ১-এ বলা হয়েছে, নির্বাচন-পূর্ব সময়ে কোনো সরকারি, আধা সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রকল্পের অনুমোদন, ঘোষণা বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন বা ফলক উন্মোচন করা যাবে না।উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা আরজুমান্দ বানু বলেন, ‘সাংসদের বিদ্যালয়ের নবনির্মিত ভবনের ফলক উন্মোচনের কথা শুনেছি। তবে আমি ওই অনুষ্ঠানে যেতে পারিনি।’জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সালাহউদ্দিন বলেন, তফসিল ঘোষণার পর কোনো সাংসদ ফলক উন্মোচন করতে পারেন না। এটা নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনেরই শামিল। সাংসদ মজাহারুল হক প্রধান প্রথম আলোকে বলেন, দলীয়ভাবে প্রার্থী ঘোষণা না দেওয়া পর্যন্ত সাংসদ হিসেবে তিনি ফলক উন্মোচন করতে পারেন।চট্টগ্রামের নয়টি আসনের নির্বাচনের ব্যালট পেপারসহ যাবতীয় সরঞ্জাম চট্টগ্রাম এসে পৌঁছেছে। গতকাল শনিবার সকালে ঢাকা থেকে এসব সামগ্রী চট্টগ্রামে আসে। নির্বাচনের আগের দিন এসব সরঞ্জাম প্রতিটি আসনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে বলে জানা গেছে।ব্যালট পেপার ও সরঞ্জামগুলো পুলিশ পাহারায় গতকাল নগরের এম এ আজিজ স্টেডিয়ামের জিমনেসিয়ামে রাখা হয়। জিমনেসিয়ামটি নির্বাচনের সময় নিয়ন্ত্রণকক্ষ হিসেবে ব্যবহূত হবে। আগামী ৮ জানুয়ারি পর্যন্ত এটি নির্বাচনী কাজে ব্যবহার করা হবে।গতকাল আসা সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে ব্যালট পেপার, নির্দেশিকা, অমোচনীয় কালি, সিল ও বিভিন্ন সচেতনতামূলক পোস্টার। মাস খানেক আগে ঢাকা থেকে ব্যালট বাক্স চট্টগ্রাম এসে পৌঁছে।
চট্টগ্রাম একাডেমির চেয়ারম্যান ও প্রিমিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অনুপম সেন বলেছেন, ‘বই মানে আনন্দ, বই মানে সভ্যতা। মানবসভ্যতাই বই। বিশ্বও বইয়ের সৃষ্টি। মানুষকে জাগানোর জন্য, উদ্দীপ্ত করার জন্য বইয়ের ভূমিকা অনস্বীকার্য। সবকিছুর জন্য বইয়ের কাছে আমাদের যেতে হয়।’গতকাল শুক্রবার সকালে চট্টগ্রাম একাডেমি আয়োজিত শরৎকালীন বই উৎসবে তিনি এসব কথা বলেন। চট্টগ্রাম নগরের চেরাগী পাহাড়সংলগ্ন একাডেমি মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত তিন দিনব্যাপী আয়োজনে তিনি প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন।উৎসবের উদ্বোধক ছিলেন সাহিত্যিক, শহীদজায়া বেগম মুশতারী শফী। উৎসব আহ্বায়ক আমিনুর রশীদ কাদেরীর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন উৎসবসচিব মো. জাহাঙ্গীর মিঞা। অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য দেন একাডেমির মহাপরিচালক নেছার আহমদ, হূদেরাগ বিশেষজ্ঞ মো. রেজাউল করিম।বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব সালাহ উদ্দিন আহমদ ঘোষণা দিয়েছিলেন, ২৫ অক্টোবর তিনি হুকুম দিতে না পারলেও কক্সবাজারসহ চকরিয়াকে অচল করে দিতে হবে। তাঁর ঘোষণামতেই জেলা বিএনপির সহসভাপতি এনামুল হক তাঁর বাড়িতে দাগি অপরাধীদের ভারী অস্ত্র নিয়ে জড়ো করে রাখেন। ওই সন্ত্রাসীরাই ২৫ অক্টোবর ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে নৈরাজ্য সৃষ্টি করে। সেখানেই দুটি তাজা প্রাণ ঝরে যায়। এর দায়দায়িত্ব সালাহ উদ্দিন আহমদ ও এনামুল হকদের নিতে হবে।গতকাল সোমবার কক্সবাজারের চকরিয়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি জাফর আলম দলের উপজেলা কার্যালয়ে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সেদিন ১৪৪ ধারার আদেশের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে আওয়ামী লীগ চকরিয়া পৌর শহরে কোনো সভা-সমাবেশ করেনি। তাই বিএনপির মিছিলে আওয়ামী লীগের হামলার প্রশ্নই ওঠে না।সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজকল্যাণ সম্পাদক নুরুল আবছার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস উদ্দিন চৌধুরী, পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি জাহেদুল ইসলাম।তাঁরা তিন ভাইবোন। আওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে জড়িত দীর্ঘদিন। কিন্তু রাজনীতির মাঠে কেউ কাউকে ছাড় দিতে নারাজ। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে কক্সবাজার-৩ (সদর-রামু) আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন চেয়েছেন এই তিনজন। তাঁরা হলেন সাবেক সাংসদ প্রয়াত ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরীর দুই ছেলে সাইমুম সরওয়ার ও সোহেল সরওয়ার ও মেয়ে নাজনীন সরওয়ার। সব ছাপিয়ে ভোটারদের মুখে আলোচনার বিষয় এখন তিন ভাইবোন।রামুর রাজারকূল ও ফতেখাঁরকূল গ্রামের কৃষক রফিক উদ্দিন (৪৬) ও মমতাজুল ইসলাম (৬১) বলেন, গতবার ওসমান মিয়ার মেজো ছেলে সাইমুম সরওয়ার মহাজোটের প্রার্থী হিসেবে নির্বাচন করেন। তখন বড় ভাই সোহেল সরওয়ার তাঁর বিরোধিতা করেন। ফলে বিএনপির প্রার্থীর হাতে পরাজিত হন তিনি। দুই ভাইয়ের দ্বন্দ্বের মধ্যে আগুন ছড়াচ্ছেন বোন নাজনীন সরওয়ার । তিনিও এবার একই আসন থেকে দলের মনোনয়ন চেয়েছেন। তিন ভাইবোন প্রার্থী হওয়ার ঘোষণা দেওয়ায় ওসমান মিয়ার ভক্ত-সমর্থকেরা বিভ্রান্ত হচ্ছেন।দলীয় সূত্র জানায়, ২৪ নভেম্বর গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা মনোনয়নপ্রত্যাশীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং আসন্ন নির্বাচন নিয়ে দিকনির্দেশনা দেন। এ সময় তিনি একক প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে প্রতিটি আসনের সম্ভাব্য প্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলেন।সেখানে উপস্থিত কয়েকজন প্রার্থী বলেন, কক্সবাজার-৩ আসন নিয়ে আলোচনার সময় সব মনোনয়নপ্রত্যাশীকে শেখ হাসিনা সামনের সারিতে ডেকে আনেন। তারপর ওসমান সরওয়ার আলম চৌধুরীর তিন ছেলেমেয়েকে আলাদাভাবে সামনে দাঁড় করান। এ সময় বোনের দুই পাশে দুই ভাই দাঁড়িয়ে শেখ হাসিনার প্রশ্নের জবাব দেন।এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে জেলা আ.লীগের সাংস্কৃতিকবিষয়ক সম্পাদক নাজনীন সরওয়ার প্রথম আলোকে বলেন, ‘গণভবনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাদের তিন ভাইবোনকে নিয়ে আলাদা কথা বলেন। আমাদের পরিবারের প্রতি তাঁর (শেখ হাসিনার) যথেষ্ট সম্মান থাকলেও ভাইদের দ্বন্দ্বের কারণে তা আমরা কাজে লাগাতে পারছি না।’এক প্রশ্নের জবাবে নাজনীন সরওয়ার বলেন, দুই ভাই নিয়ে পক্ষপাত করার জন্য প্রার্থী হইনি। দুই ভাই মনোনয়ন পাওয়ার যোগ্য। কিন্তু তাঁরা ত্যাগ স্বীকার করতে জানেন না। আমি দল থেকে মনোনয়ন পেলে মানুষের ভাগ্যের উন্নয়নে কাজ করে যাব। আর অন্য কাউকে দিলে দলের স্বার্থে তাঁর পক্ষে কাজ করব। রামু উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি সোহেল সরওয়ার জানান, মনোনয়ন পাওয়ার ক্ষেত্রে তিনি আশাবাদী। সাইমুম সরওয়ার জানান, গতবার তিনি মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন। এবারও তাই আশা করছেন।তিন ভাইবোন ছাড়াও এ আসনে আরও ১১ জন মনোনয়নপ্রত্যাশী রয়েছেন। তাঁরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক নুরুল ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক রণজিত দাশ, কক্সবাজার পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি মুজিবুর রহমান, জেলা মহিলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কানিজ ফাতেমা, হাইকোর্টের আইনজীবী মিজান সাঈদ, নওরোজ এম রাসেল চৌধুরী, জেলা আওয়ামী লীগের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিবিষয়ক সম্পাদক বদিউল আলম, জেলা আওয়ামী লীগের সদস্য রাশেদুল ইসলাম, জেলা যুবলীগের সভাপতি খুরশেদ আলম, জেলা আওয়ামী ওলামা লীগের নেতা শওকত হায়াত ও কক্সবাজার পৌরসভার সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল আবছার।‘শীতের কাপড় নাই। ঠান্ডায় খুব কষ্ট করছিলাম। শীতে কাঁপি কাঁপি রাইত যার। কমল (কম্বল) পাইয়া খুব ভালা লাগের। আমরারে কেউ কুনতা (কিচ্ছু) দেয় না। অত দূর থাকি আপনারা যে আমরারে মনে করছইন। এর লাগি আমরা অনেক খুশি।’গত শুক্রবার প্রথম আলো মৌলভীবাজার বন্ধুসভার শীতবস্ত্র বিতরণকালে কম্বল পেয়ে এভাবে প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন কমলগঞ্জ উপজেলার মুন্সীবাজার ইউনিয়নের মইডাল গ্রামের সুমতি শব্দকর (৬০)।গতকাল উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ১২০ জন শীতার্ত মানুষের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়।
সড়ক দুর্ঘটনার জন্য অভিযুক্ত চালকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে খেলাঘর চট্টগ্রাম মহানগর শাখার উদ্যোগে গতকাল শুক্রবার বিকেলে মানববন্ধন ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে।এতে বক্তারা বলেন, ‘বেপরোয়া গাড়ি চালনা রোধ করা না গেলে নুসরাতের মতো শিশুরা স্বজন হারানোর পাশাপাশি মনোবৈকল্যের শিকার হবে।’ চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবের সামনে বৃষ্টিবিঘ্নিত এই কর্মসূচিতে ঢাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় মা হারানো নুসরাতের মতো শিশু-কিশোর ও তাঁদের অভিভাবকেরা অংশগ্রহণ করেন। চালকদের সর্বোচ্চ শাস্তির দাবি, বেপরোয়া গাড়ি চালনা বন্ধ করা, দুর্ঘটনা নয়, হত্যাকাণ্ড ইত্যাদি স্লোগানসংবলিত ব্যানার-ফেস্টুন তাঁদের হাতে শোভা পায়। খেলাঘর মহানগর শাখার সভাপতি বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘কঠোর শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না বলে চালকেরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। এতে করে নুসরাতের মতো শিশুরা আজ এতিম হওয়ার পাশাপাশি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। শিশু-কিশোরদের এসব যন্ত্রণার হাত থেকে আমাদের বাঁচাতে হবে।’উল্লেখ্য, গত বুধবার ঢাকায় নুসরাত নামের পাঁচ বছরের এক শিশুর সামনে তাঁর মা লায়লাকে একটি বাস চাপা দিলে তিনি নিহত হন। গতকালের কর্মসূচিতে খেলাঘরের সাধারণ সম্পাদক রূপক চৌধুরী, সংগঠক সালমা জাহান, কবি আশীষ সেন, সুনীল ধর প্রমুখ বক্তব্য দেন।চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা জামায়াতের আমির জাফর সাদেককে কারা ফটক থেকে আটক করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে মুক্তির পর জাফর সাদেককে আটক করে পুলিশ। তাঁর বিরুদ্ধে নাশকতা সৃষ্টির পরিকল্পনা, বিস্ফোরক, পুলিশের ওপর হামলাসহ ১১টি মামলা রয়েছে। গত ২৫ এপ্রিল পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়ে কারাগারে যান তিনি।চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের উপ-কারাধ্যক্ষ নুর মোহাম্মদ সোহেল বলেন, ‘১১ মামলায় জামিনের আদেশ থাকায় জাফর সাদেককে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। বিষয়টি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকেও অবহিত করা হয়।’চট্টগ্রাম মহানগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার বনজ কুমার মজুমদার প্রথম আলোকে গতকাল সন্ধ্যায় বলেন, ‘জামায়াতের নেতা জাফর সাদেককে নগর গোয়েন্দা ও পাঁচলাইশ থানার পুলিশ কারা ফটক থেকে আটক করেছে। বর্তমান অস্থিতিশীল পরিস্থিতিতে তিনি নাশকতার পরিকল্পনা করতে পারেন বলে পুলিশের কাছে তথ্য রয়েছে।’পঞ্চগড়ে গত ১৩ বছরে জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থা থেকে অসচ্ছল, সহায়-সম্বলহীন এবং নানা আর্থ-সামাজিক কারণে বিচারপ্রাপ্তিতে অসমর্থ এক হাজার ১৩৭ জন বিচারপ্রার্থীকে বিনা মূল্যে আইনগত সহায়তা দেওয়া হয়েছে। এ পর্যন্ত নিষ্পত্তি হয়েছে ৫৩৫টি মামলা। বর্তমানে বিচারাধীন আছে ৫৫৮টি। চলতি মাসে আরও তিনটি মামলার আবেদন পাওয়া গেছে।জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সভাকক্ষে আয়োজিত মাসিক সভায় গত সোমবার বিকেলে সংস্থার সদস্যসচিব নজরুল ইসলাম এ তথ্য জানান।জেলা ও দায়রা জজ মুহম্মদ মাহবুব উল ইসলামের সভাপতিত্বে সভাটি হয়। এতে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ নুর আলী, মুখ্য বিচারিক হাকিম আবু মনসুর মো. জিয়াউল হক, যুগ্ম জেলা জজ মামুনুর রশীদ, জ্যেষ্ঠ সহকারী জজ ও জেলা আইনগত সহায়তা কর্মকর্তা খাইরুল ইসলাম, আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও সরকারি কৌঁসুলি আমিনুর রহমান, জিপি আফজাল হোসেন বক্তব্য দেন। এ সময় বিচারকসহ কমিটির সব সদস্য উপস্থিত ছিলেন।পরে একই স্থানে ব্র্যাকের মানবাধিকার ও আইন সহায়তা কর্মসূচির আওতায় আরেকটি মতবিনিময় সভা হয়।ঘন কুয়াশা আর কনকনে শীতের দাপটকে সঙ্গী করে রাজধানীবাসীর ঘুম ভেঙেছে গতকাল শনিবার। দুপুরে এক চিলতে রোদের দেখা মিললেও তা ঠান্ডার দাপট কমাতে পারেনি। দু-তিন দিন ধরে এমন আবহাওয়াই ছিল সারা দেশে। আবহাওয়ার পূর্বাভাস বলছে, এমন শীত আরও দু-এক দিন থাকবে। তবে রাজধানীতে কোনো শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যায়নি। শৈত্যপ্রবাহ ছিল ঈশ্বরদী, রাজশাহী ও শ্রীমঙ্গলে। সেখানকার তাপমাত্রা ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে গতকাল ছিল, আজও থাকবে। দেশের অন্যত্র তাপমাত্রা গতকালের মতোই থাকবে। রাত ও দিনের তাপমাত্রা একই থাকতে পারে। দেশের উত্তর ও পূর্বাঞ্চলের ওপর দিয়ে যে শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে, তাকে মৃদু বলছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। মাঝারি ও তীব্র শৈত্যপ্রবাহ এখনো শুরু হয়নি। জানুয়ারিতে দুই থেকে তিনটি শৈত্যপ্রবাহ বয়ে যেতে পারে।
চট্টগ্রামে তিন দিনব্যাপী ১১তম বিডি-রেড আবাসন মেলা আজ শনিবার শেষ হবে। এ উপলক্ষে আজ সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে সমাপনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে।ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে অনুষ্ঠিত এবারের মেলায় ৩৫টি ডেভেলপার কোম্পানি, সাতটি মেটেরিয়াল কোম্পানি ও একটি গৃহঋণ প্রতিষ্ঠান অংশ নিচ্ছে। ‘এসো সবুজ নগরী গড়ি, প্রাণের শহর প্রাণের মানুষ বাঁচুক বুক ভরা নিঃশ্বাসে’ শিরোনামে এ মেলার আয়োজন করে বিডি-রেড কর্তৃপক্ষ।গত বৃহস্পতিবার মেলার উদ্বোধন করেন চট্টগ্রাম মেয়র মোহামঞ্চদ মন্জুর আলম।মেলা উপলক্ষে শিশুদের চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা ও সেমিনারের আয়োজন করা হয়েছে। আজ রাত আটটায় মেলার সমাপনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন আইইবি চট্টগ্রাম কেন্দ্রের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী মানজীর খোরশেদ আলম।রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলা সদরে গুলিতে এক ব্যক্তি আহত হওয়ার ঘটনায় মামলা হয়েছে। গুলিতে আহত আবদুর রশিদ গত রোববার রাতে এ মামলা করেন।থানা সূত্র জানায়, মামলায় জনসংহতি সমিতির (সন্তু) বাঘাইছড়ি শাখার সাধারণ সম্পাদক বড়ঋষি চাকমাসহ নয়জনকে আসামি করা হয়েছে। এজাহারে বলা হয়, ১৮ অক্টোবর রাতে তিনজন অস্ত্রধারী উপজেলা সদরে আসে। এ সময় জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) রাঙামাটি জেলা কমিটির সাংগঠনিক সম্পাদক চিত্র বিকাশ চাকমা ও মধ্যমপাড়া গ্রামের আবদুর রশিদ গল্প করছিলেন। সে সময় অস্ত্রধারীরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি চালায়।লাটভিয়ার রাজধানী রিগার একটি বিপণিবিতান ধসে ৫৪ জনের মৃত্যুর ঘটনার দায়ভার নিয়ে গতকাল বুধবার পদত্যাগ করেছেন প্রধানমন্ত্রী ভালদিস দমব্রভস্কিস। একই সঙ্গে তিনি তাঁর মন্ত্রিসভা ভেঙে দিয়েছেন। ইউরোজোনে অন্তর্ভুক্ত হওয়ার মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে এ ঘটনা ঘটল।প্রেসিডেন্ট আন্দ্রিস বেরজিনেসের সঙ্গে সাক্ষাতের পর প্রধানমন্ত্রী তাঁর পদত্যাগের ঘোষণা দেন। পরে দমব্রভস্কিস সাংবাদিকদের বলেন, ‘বিপর্যয় এবং সার্বিক পরিস্থিতি বিবেচনা করে আমাদের মনে হয়েছে, এখন একটি নতুন সরকার প্রয়োজন, যার প্রতি পার্লামেন্টের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে।’২১ নভেম্বর ম্যাক্সিমা সুপার মার্কেটের ভবন ধসে অন্তত ৫৪ ব্যক্তি প্রাণ হারায়। প্রেসিডেন্ট বেরজিনেস এ দুর্ঘটনাকে ‘হত্যাকাণ্ড’ বলে অভিহিত করে আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের দিয়ে ঘটনা তদন্তের আহ্বান জানান।দমব্রভস্কিস গতকাল প্রেসিডেন্টের সঙ্গে প্রায় দেড় ঘণ্টা বৈঠক করেন। বার্তা সংস্থা প্রেসিডেন্টের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, ‘যাঁরা ভবিষ্যতের কথা ভাবেন তাঁদের সবাইকে অনুরোধ করছি, নিজ নিজ দায়িত্ব বুঝে নিয়ে সে অনুযায়ী কাজ করুন।’প্রধানমন্ত্রীর মুখপাত্র বলেন, ‘সরকার দুর্ঘটনার রাজনৈতিক দায়দায়িত্ব স্বীকার করে নিয়েছে।’পুলিশ ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। ভবন বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিপণিবিতানটির নকশা ঠিকভাবে করা হয়নি। এর ছাদে যে বাগান করা হয়েছিল, সেটির ভারে ভবনটি ধসে পড়েছে। ধারণা করা হচ্ছে, ভবন নির্মাণে মানসম্মত উপকরণ ব্যবহূত হয়নি।প্রেসিডেন্ট বেরজিনেস প্রধানমন্ত্রীর পদত্যাগপত্র গ্রহণ করতে পারেন, আবার ফিরিয়েও দিতে পারেন। গ্রহণ করলে তিনি নতুন কাউকে সরকার গঠনের আহ্বান জানাবেন। ২০১৪ সালের অক্টোবরে এ সরকারের মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল।১৯৯১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়ন ভেঙে যাওয়ার পর লাটভিয়া স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে যাত্রা শুরু করে। গত কয়েক দশকে এটিই দেশটির সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা।গত এক বছরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের পাশাপাশি বিশ্বজুড়ে ভবনধসে কয়েক হাজার মানুষ প্রাণ হারায়। এএফপি ও বিবিসি।মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলার ফুলতলা ইউনিয়নের বটুলি সীমান্তে ভারত থেকে চোরাইপথে আসা মোটরসাইকেলের রমরমা ব্যবসা চলছে।সম্প্রতি সরেজমিনে সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, বটুলিতে পণ্য আমদানি-রপ্তানির সুবিধার্থে ভারতের সঙ্গে সংযোগকারী একটি বেইলি সেতু রয়েছে। গভীর রাতে ওই সেতু দিয়ে চোরাকারবারীরা ভারতীয় মোটরসাইকেল পাচার করে। ব্র্যান্ড ও মডেলভেদে এসব মোটরসাইকেল ৭০ হাজার থেকে এক লাখ টাকায় বিক্রি হয়। পাচার হওয়ার পর এসব মোটরসাইকেলের পেছনে বাংলাদেশি মোটরসাইকেল বিক্রেতা প্রতিষ্ঠানগুলোর ‘অন টেস্ট (পরীক্ষামূলক)’ লেখা স্টিকার লাগিয়ে দেওয়া হয়।বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সূত্রে জানা গেছে, ৬ ডিসেম্বর তাদের টহল দল ধাওয়া করে ভারত থেকে চোরাইপথে আনা ‘পালসার’ মডেলের একটি মোটরসাইকেল আটক করে। তবে এ ঘটনায় জড়িত কাউকে আটক করা যায়নি। পরে মোটরসাইকেলটি স্থলবন্দর কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হয়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানান, মোটরসাইকেল পাচারে ভারতের সীমান্ত এলাকায় বসবাসকারী কিছু লোকের সঙ্গে স্থানীয় ও উপজেলা সদরের একটি চক্র জড়িত। সিলেটের বিয়ানীবাজার, বিশ্বনাথ ও শ্রীমঙ্গল এলাকার লোকজন প্রায়ই মোটরসাইকেল কিনতে বটুলি সীমান্তের পাশের ফুলতলা বাজারে যান। সেখানে গোপন স্থানে পছন্দ ও দর-কষাকষি করে মোটরসাইকেল বেচাকেনা চলে।বেচাকেনায় মধ্যস্থতাকারী এক মোটরসাইকেল মেকানিক বলেন, ‘দেশে সাইকেলের দাম বেশি। ইখানে (বটুলি) সস্তায় পাওয়া যায়। বেচরা-কিনরা (বিক্রেতা-ক্রেতা) দুইয়েরই ভালা লাভ অয়। লাভের অংশ থেকে আমরাও কিছু পাই।’উপজেলা সদরে অবস্থিত মোটরসাইকেল বিক্রির কয়েকটি প্রতিষ্ঠানের মালিক এ প্রতিবেদককে জানান, তাঁরা যেসব সাইকেল বিক্রি করেন সেগুলোর বিক্রয় রশিদ তাঁদের কাছে রয়েছে। চোরাকারবারীরা বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের ‘ভুয়া’ স্টিকার ব্যবহার করেন বলে তাঁদের ধারণা।বিজিবির ৫২ ব্যাটালিয়নের ফুলতলা ক্যাম্পের অধিনায়ক সুবেদার গোলাম মোস্তফা বলেন, বটুলি দিয়ে মাঝেমধ্যে লুকিয়ে দুই-একটি মোটরসাইকেল পাচার হয়। বটুলি গ্রামের কিছু লোক এ কাজে জড়িত বলে জানা গেছে। তাঁদের সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।জুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘সীমান্ত দিয়ে মোটরসাইকেল পাচার ও বেচাকেনার ব্যাপারে আমাদের কাছে কোনো তথ্য নেই। আমরা প্রায়ই অভিযান চালিয়ে মোটরসাইকেলসহ বিভিন্ন ধরনের যানবাহনের কাগজপত্র পরীক্ষা করি। তখন ত্রুটি পাওয়া গেলে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়।’
আজ ২৮ সেপ্টেম্বর। এই তারিখে জন্মগ্রহণ করায় পাশ্চাত্যমতে আপনি তুলা রাশির জাতক বা জাতিকা। আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা ১ ও ৬। গুরুত্বপূর্ণ দিন শুক্র ও রোববার। শুভ রং হালকা নীল, মেজেন্টা ও সোনালি। শুভ রত্ন গোল্ডেন টোপাজ ও অ্যাকুয়ামেরিন। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব লতা মুঙ্গেশকর ও ব্রিজিতবার্দো, ফিল্ড মার্শাল লর্ড ফ্রেঞ্জ। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক আপনার রাশিতে আজকের পূর্বাভাস:মেষ (২১ মার্চ-২০ এপ্রিল)কর্মস্থলে প্রতিপক্ষের বিরোধিতা সত্ত্বেও গুরুত্বপূর্ণ কাজে সাফল্যের দেখা পাবেন। পারিবারিক দ্বন্দ্বের অবসান হবে। শিল্পকলাধর্মী কর্মকাণ্ডেরজন্য সম্মাননা পেতে পারেন। প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য দিনটি বিশেষ শুভ।বৃষ (২১ এপ্রিল-২১ মে)কর্মস্থলে আপনার সাফল্যে অনেকের চোখ কপালে উঠতে পারে। সৃজনশীল পেশায় সুনাম ছড়িয়ে পড়বে। পাওনা আদায় হবে। প্রেমের ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। যাবতীয় কেনাকাটায় লাভবান হবেন।মিথুন (২২ মে-২১ জুন)শিল্পকলা কিংবা সমাজকল্যাণমূলক কর্মকাণ্ডের জন্য প্রশংসিত হবেন। পারিবারিক প্রয়োজনে অন্যের মতামতকে প্রাধান্য দিতে হতে পারে। ব্যবসায়িক লেনদেন শুভ। ভেঙে যাওয়া প্রেমের সম্পর্ক জোড়া লাগতে পারে।কর্কট (২২ জুন-২২ জুলাই)বেকারদের কারও কারও ব্যবসায়িক উদ্যোগ ফলপ্রসূ হতে পারে। আজ কারও কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন। ফেসবুক দেখুন—কারও মন্তব্য হয়তো আপনার প্রতি প্রেমের ইঙ্গিত করছে। দূরের যাত্রা শুভ।সিংহ (২৩ জুলাই-২৩ আগস্ট)কর্মস্থলে কারও অসহযোগিতার কারণে গুরুত্বপূর্ণ কাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে। আজ আপনার অর্থভাগ্য বিশেষ শুভ। ভালো লাগার মানুষটি আজ ভালোবাসার মানুষে পরিণত হতে পারে। যাবতীয় কেনাকাটা শুভ।কন্যা (২৪ আগস্ট-২৩ সেপ্টেম্বর)ব্যবসায় নতুন বিনিয়োগ আশার সঞ্চার করবে। সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ততা বৃদ্ধি পেতে পারে। পাওনা আদায়ে অন্যের সহযোগিতা পাবেন। প্রবাসী কারও সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্কের সূচনা হতে পারে। দূরের যাত্রা শুভ।তুলা (২৪ সেপ্টেম্বর-২৩ অক্টোবর)শিল্পকলায় অবদানের জন্য বিদেশ থেকে সম্মাননা পেতে পারেন। দূরের যাত্রায় অচেনা সহযাত্রীর ব্যাপারে সতর্ক থাকুন। শিক্ষাক্ষেত্রে কারও কারও বৃত্তি পাওয়ার সম্ভাবনা আছে। যাবতীয় কেনাকাটায় লাভবান হবেন।বৃশ্চিক (২৪ অক্টোবর-২২ নভেম্বর)কর্মস্থলে তথ্যবিভ্রাটের কারণে সাময়িক জটিলতা দেখা দিতে পারে। আজ কারও কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন। নতুন কাজে হাত দেওয়ার জন্য দিনটি শুভ। প্রেমের ক্ষেত্রে ইতিবাচক সাড়া পাবেন।ধনু (২৩ নভেম্বর-২১ ডিসেম্বর)ব্যবসায় আগের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়ার সুযোগ পাবেন। বিদেশযাত্রার ক্ষেত্রে নতুন সুযোগ আসতে পারে। ফেসবুকে কারও ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য থেকে প্রেমের শুভ সূচনা হতে পারে। রাজনৈতিক তৎপরতা শুভ।মকর (২২ ডিসেম্বর-২০ জানুয়ারি)শিক্ষা কিংবা গবেষণার জন্য সম্মাননা পেতে পারেন। পরিবারের কারও অসুস্থতা আপনার সার্বিক কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। প্রেমের ব্যাপারে ভেবেচিন্তে সিদ্ধান্ত নিন। দাহ্য পদার্থ ব্যবহারে সতর্ক থাকুন।কুম্ভ (২১ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি)শিক্ষার্থীদের কারও কারও বিদেশে অধ্যয়নের প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হতে পারে। সৃজনশীল কাজের প্রসারে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের সহায়তা পেতে পারেন। ব্যর্থ প্রেমের সম্পর্কে নতুন সম্ভাবনা উঁকি দিচ্ছে। রাজনৈতিক তৎপরতা শুভ।মীন (১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ)ব্যবসায়িক যোগা-যোগের ক্ষেত্রে নতুন দিগন্ত উন্মোচিত হতে পারে। পাওনা আদায়ে অন্যের সহযোগিতা পাবেন। কর্মস্থলে আপনার সাফল্যের ধারা অব্যাহত থাকবে। প্রেমিক-প্রেমিকার জন্য দিনটি শুভ।‘হরতালে দুই দিন ধইরা গাড়ি চালান বন্ধ। এক টেয়াও রুজি নাই। চার ছেলেমেয়ে লইয়া না খাইয়া আছি। দুই দলের ক্ষমতার লোভে দ্যাশটা ধ্বংস অইতাছে। হরতাল অইল গরিব মারনের কল। যত হরতাল তত লাশ।’কথাগুলো বলেন চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলার উত্তর দিঘলদী গ্রামের রিকশাচালক আবদুস ছাত্তার। চলমান রাজনৈতিক সংকট, বিরোধী দলের ডাকা ৬০ ঘণ্টার হরতাল এবং দুই নেত্রীর ফোনালাপ প্রসঙ্গে এভাবেই তিনি প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন।আবদুস সাত্তারের মতো দেশের বিভিন্ন এলাকার নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ তাঁদের প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:মতলব দক্ষিণ (চাঁদপুর): উপজেলা সদর বাজারের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী বাবুল ঘোষ বলেন, ‘আমরা গরিব মানুষ। সংলাপ-সংবিধানের প্যাঁচ বুঝি না। দুই দলের সংলাপে কী অইব, তা-ও জানি না। আমরা চাই শান্তি। এ দেশে অনেক হরতাল অইছে। আর কত? হরতাল কার জন্য, কীসের জন্য? দুই দিনের হরতালে আমাগো বেচাবিক্রি নাই। আয় না অইলে খামু কী, বাঁচুম ক্যামনে।’কলেজগেট এলাকার চা বিক্রেতা মো. লিটন বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রীর ফোনে খালেদা জিয়ার সাড়া দেওন উচিত ছিল। হরতাল পরেও করন যাইত। হেগো দুই দলের দুই মত। দুইডারে এক করন উচিত। প্রধানমন্ত্রীর উচিত তত্ত্বাবধায়ক দিয়া দেওন।’মৌলভীবাজার: জেলা শহরের কোর্ট রোডে একটি ভবনের বারান্দায় বসে জুতা সেলাই ও জুতায় রং দেওয়ার কাজ করেন বাবুল চন্দ্র ঋষি (২৩)।তিনি বলেন, ‘একেবারে বাঁচার আর উপায় নাই। হরতাল আমরারে ভালোমতো মারছে। গরিবই তো মরব। বড়লোকের তো কোনো সমস্যা নেই। তারা ঠিক আছে। হাসিনা-খালেদার মধ্যে এই গণ্ডগোল চলছে। কিন্তু মাঝপথে আমরার মতো গরিব মরব।’ জিনিসপত্রের দাম নিয়ে শহরের পশ্চিমবাজার এলাকার জুলফিকার আলী ভুট্টো বলেন, ‘পেঁয়াজের দাম হরতালে আরও বেড়েছে। ১২ টাকার আলু এখন ১৬ টাকা (প্রতি কেজি) হয়েছে। ২০ টাকা কেজির লালশাক ও মুলা ৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আমাদের মতো সাধারণ মানুষকে নিয়ে কারও কোনো ভাবনা নেই।’শেরপুর: ‘এখন হরতাল মানে সংঘাত-সংঘর্ষ আর প্রাণহানি। আমরা সাধারণ মানুষ এই সংঘাত-সংঘর্ষের হরতাল চাই না। আমরা একটু শান্তিতে বাঁচতে চাই, শান্তিতে ব্যবসা-বাণিজ্য করতে চাই। তাই আমাদের বড় দুই রাজনৈতিক দলের নেত্রীকে সংঘাতের পথ পরিহার করে সমঝোতায় আসতে হবে। শুধু ক্ষমতা দখল বা ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য নয়, জনগণের কল্যাণের জন্য নিজেদের ছাড় দিতে হবে। তবেই দেশে শান্তি ফিরে আসবে। আর সাধারণ মানুষ শান্তিতে জীবন যাপন করতে পারবে।’গতকাল এই কথাগুলো বলেন জেলা শহরের নওহাটা এলাকার চাল ব্যবসায়ী মো. হাবিবুর রহমান। শেরপুর জেলা শহরের মুন্সিবাজারের রড-সিমেন্ট বিক্রির দোকানে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন সদর উপজেলার পাকুরিয়া গ্রামের আহামঞ্চদ আলী। তিনি জানান, তিনি প্রতিদিন ২০০-৩০০ টাকা মজুরি পান। কিন্তু হরতালের কারণে দুই দিন ধরে ঢাকা থেকে রড-সিমেন্টবাহী কোনো ট্রাক না আসায় কাজকর্ম নেই। তাই কোনো মজুরিও পাননি। ফলে সংসার চালাতে তাঁর ভীষণ কষ্ট হচ্ছে।বাগানজুড়ে রসে ভরপুর কাঁচা-পাকা আনারস। শীতকালে এ দৃশ্য স্বাভাবিক না হলেও খাগড়াছড়ির রামগড়ের পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের বাগানে তেমনটাই দেখা গেল। মৌসুম না হলেও গবেষকদের প্রচেষ্টায় এই কেন্দ্রের সাত একর জায়গায় হানিকুইন জাতের আনারসের ব্যাপক ফলন হয়েছে।পরীক্ষামূলক এই চাষে সাফল্য আসায় গবেষকেরা আশা করছেন, বাণিজ্যিকভাবে শীতকালে আনারস চাষ করে আয় বাড়াতে পারবেন কৃষকেরা।রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা অরিন্দম বিশ্বাস প্রথম আলোকে বলেন, হানিকুইন জাতের আনারসে হরমোন প্রয়োগের ২০ থেকে ৪০ দিন পর গাছে ফুল আসে এবং পাঁচ থেকে ছয় মাস পর ফল সংগ্রহ করা যায়। তিনি আরও বলেন, হরমোন প্রয়োগ করে চাষ করলে কৃষকেরা বছরের বিভিন্ন সময়ে ফল আহরণ করে আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারেন।গবেষণাকেন্দ্রের বিজ্ঞানীরা জানান, অদিনের আনারস ফলানোর জন্য ইথ্রেল হরমোন ব্যবহার করা হয়। হরমোন প্রয়োগে প্রায় শতভাগ গাছে একসঙ্গে ফুল আসে। চারার বয়স নয় মাস হলে বা চারার ২২টি পাতা গজালে হরমোন প্রয়োগ করে আধা কেজি ওজনের ফল পাওয়া যায়। আবার চারার ১৩ মাস বয়সে ২৮টি পাতা গজালে হরমোন প্রয়োগ করে এক কেজি ওজনের ফল পাওয়া যায়।কেন্দ্রের গবেষকেরা জানান, শীতকালে প্রতি একরে আড়াই হাজার গাছে আনারস ফলিয়ে এক লাখ টাকা আয় করা সম্ভম।জানা গেছে, পাকা হানিকুইন আনারসের শাঁস হলুদ রঙের হয়। আনারসের প্রচলিত জাতের মধ্যে এটিই সবচেয়ে মিষ্টি। খাগড়াছড়ি কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তা ওঙ্কার বিশ্বাস বলেন, এখন আনারসের মৌসুম নয়। তাই হরমোন প্রয়োগে আনারস চাষ করলে কৃষকেরা তিন গুণ লাভ পাবেন।রামগড় পাহাড়াঞ্চল কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা জুলফিকার আলী বলেন, আনারস জুন-জুলাই মাসের ফল হলেও হরমোন প্রয়োগের মাধম্যে সহজেই শীতকালে ফলন পাওয়া সম্ভব।হরমোন প্রয়োগ করে উৎপন্ন ফল কতটুকু স্বাস্থ্যসম্মত জানতে চাইলে খাগড়াছড়ি পাহাড়ি কৃষি গবেষণাকেন্দ্রের ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা আবদুর রউফ বলেন, ‘হরমোনের কাজ হচ্ছে ফুল ফোটানো। আমরা পরীক্ষা করে দেখেছি, পাকা ফলে হরমোনের কোনো ক্ষতিকর প্রভাব থাকে না। সকাল নয়টা থেকে বেলা ১১টার মধ্যে হরমোন প্রয়োগ করতে হয়। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে বৃষ্টি না হলে ফলন ভালো হয়।ইগনাইট মানে হলো প্রজ্বলিত করা। বিজ্ঞান নিয়ে শিক্ষার্থীদের মধ্যে আগ্রহ কমে গেছে। তাদের মধ্যে বিজ্ঞান নিয়ে আগ্রহ বাড়িয়ে দিতে হবে। তাদের ভেতরের আগুন জ্বালাতে হবে। এ ধরনের উদ্দেশ্য সামনে রেখেই শুরু হচ্ছে বিজ্ঞানবিষয়ক প্রতিযোগিতা ‘ইগনাইট’।যৌথভাবে এ প্রতিযোগিতার আয়োজন করছে দ্য ডেইলি স্টার ও গ্রামীণফোন। গতকাল শনিবার ডেইলি স্টার কার্যালয়ে দুই প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের উপস্থিতিতে এক সংবাদ সম্মেলনে এ প্রতিযোগিতার আনুষ্ঠানিকভাবে উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়। ‘ইন্টারনেট প্রজন্মের জন্য বিজ্ঞান’—এ স্লোগান সামনে রেখে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে।সংবাদ সম্মেলনে ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহ্ফুজ আনাম বলেন, সবকিছু অচল থাকলেও মুঠোফোন থাকে সচল। এখানেও আছে বিজ্ঞান। বিজ্ঞান এখন আর শুধু পাঠ্যবইয়ের জ্ঞান নয়। জীবন সামনের দিকে নিয়ে যাওয়ার জন্যই বিজ্ঞান প্রয়োজন। জলবায়ু পরিবর্তনসহ বিভিন্ন কিছু মোকাবিলা করার জন্যই বিজ্ঞান জরুরি। অথচ গণমাধ্যমসহ সব জায়গাতেই বিষয়টি অবহেলিত।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়েছে, ঢাকা, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের ৭৫টি স্কুলের ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর দুই লাখ শিক্ষার্থী এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেবে। একই সঙ্গে দুই হাজার শিক্ষকের কাছে বিজ্ঞানশিক্ষার প্রয়োগ ও প্রয়োজনীয়তার বার্তাটিও পৌঁছে যাবে বলেই আশা করছে আয়োজন প্রতিষ্ঠান দুটি। এ ছাড়া এ প্রতিযোগিতায় অভিভাবক এবং বিজ্ঞানসংশ্লিষ্টদেরও সম্পৃক্ত করা হবে। বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সম্পৃক্ততা বাড়াতে বৈজ্ঞানিক সম্মেলনেরও আয়োজন করা হবে।প্রতিযোগিতার বিভিন্ন তথ্য জানানোর জন্য একটি ওয়েবসাইটের উদ্বোধন করা হবে। আগামী বছর ফেব্রুয়ারির দিকে তিনটি বিভাগে প্রতিযোগিতাটি অনুষ্ঠিত হবে।ডিসকভার সায়েন্স বিভাগে বিভিন্ন কুইজ বা প্রশ্নোত্তর পর্ব থাকবে। আইডিয়া ফ্লাইট বিভাগে শিক্ষার্থীরা নিজেদের তৈরি বিভিন্ন প্রজেক্ট দেখানোর সুযোগ পাবে। ইমাজিন দি ফিউচার বিভাগে শিক্ষার্থীরা বিজ্ঞান ভবিষ্যতে কী করতে পারে, তা নিয়ে বিভিন্ন মডেল তৈরি করবে।সংবাদ সম্মেলনে ডেইলি স্টার-এর ব্যবস্থাপনা সম্পাদক সালেহউদ্দিন আহমেদ, ব্যবস্থাপক (বিজনেস ডেভেলপমেন্ট) শাহরিয়ার শহীদ এবং গ্রামীণফোনের করপোরেট কমিউনিকেশনসের প্রধান সৈয়দ তাহমীদ আজিজুল হক প্রতিযোগিতার বিভিন্ন দিক নিয়ে কথা বলেন।
ফেনীতে গতকাল শুক্রবার দুপুরে সামাজিক বন বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপুল এলাকা থেকে একটি কাভার্ড ভ্যানসহ অন্তত ৪০০ ঘনফুট সেগুন কাঠ আটক করেছেন। আটক করা কাঠের আনুমানিক মূল্য ধরা হয়েছে ছয় লাখ টাকা।ফেনী সামাজিক বন বিভাগের রেঞ্জ কর্মকর্তা বাবুল চন্দ্র ভৌমিক জানান, গতকাল দুপুরে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের লালপুল এলাকায় বন বিভাগীয় কর্মকর্তারা টহল দেওয়ার সময় একটি কাভার্ড ভ্যানকে সন্দেহ হলে থামাতে সংকেত দেন। পরে ওই কাভার্ড ভ্যানের মধ্য থেকে প্রায় ৪০০ ঘনফুট চোরাই সেগুন কাঠ উদ্ধার করা হয়।সিলেট সিটি করপোরেশনের সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি বদরউদ্দিন আহমদ কামরান গত রবি ও গতকাল সোমবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ছিলেন মাঠে। মিছিল, গণসংযোগ আর পথসভায় কেটেছে সময়।বিকেলে বর্তমান মেয়র ও বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য আরিফুল হক চৌধুরী ১৮-দলীয় জোটের মিছিল ও সভায় তৎপর হন।আওয়ামী লীগ সূত্র জানায়, হরতালের প্রথম দিন বেলা ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত কর্মীদের সঙ্গে মাঠে তৎপর ছিলেন বদরউদ্দিন আহমদ। দলীয় সভা, মিছিল ও কোথাও সহিংসতা হলে মোটরসাইকেলযোগে তিনি ঘটনাস্থলে যান।গতকাল সোমবারও একইভাবে নগরের কোর্ট পয়েন্টে বেলা ১১টা থেকে একটা পর্যন্ত দেখা গেছে তাঁকে। জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও জেলা পরিষদের প্রশাসক আবদুজ জহির চৌধুরীর সভাপতিত্বে সমাবেশে বদরউদ্দিন আহমদ ছাড়াও নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আসাদ উদ্দিন আহমদ, জেলা কমিটির সাধারণ সম্পাদক সাংসদ শফিকুর রহমান চৌধুরী, জাতীয় পরিষদ সদস্য আ ন ম শফিকুল হক প্রমুখ বক্তব্য দেন।বদরউদ্দিন আহমদ জানান, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে ফোন করে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে মহানুভবতা দেখিয়েছেন। কিন্তু খালেদা জিয়া হরতালের নামে সহিংসতার পথ বেছে নিয়েছেন। তাঁর এই হীন ষড়যন্ত্র সফল হবে না।অপরদিকে মেয়র আরিফুল হক চৌধুরীকে গত শনিবার কোর্ট পয়েন্টের সমাবেশ থেকে তৎপর দেখা গেছে। হরতালের প্রথম দিন বিকেল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোর্ট পয়েন্টে ১৮-দলীয় জোটের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে অবস্থান নেন তিনি। গতকাল বিকেলে কোর্ট পয়েন্টে ১৮-দলীয় জোটের মিছিল শেষে সমাবেশ হয়। সেখানে মেয়র আরিফুল হক উপস্থিত হওয়ামাত্র নেতা-কর্মীরা মিছিলে মিছিলে সরব হয়ে ওঠেন।নগর বিএনপির সভাপতি এম এ হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে বক্তব্য দেন মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী, বিএনপির কেন্দ্রীয় সদস্য শাহরিয়ার হোসেন চৌধুরী, নগর জামায়াতের ভারপ্রাপ্ত আমির সায়েফ আহমদ, নগর বিএনপির সহসভাপতি বদরুজ্জামানসহ ১৮ দলের অঙ্গ ও সহেযাগী সংগঠনের নেতারা।হরতালে ব্যস্ত সময় কাটানো প্রসঙ্গে মেয়র প্রথম আলোকে বলেন, ‘অবাধ-সুষ্ঠু নির্বাচন নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকার ছাড়া সম্ভব নয় বলে দাবি আদায়ে রাজনৈতিকভাবে তৎপর রয়েছি।’সিরাজগঞ্জের উল্লাপাড়া উপজেলার উল্লাপাড়া মার্চেন্ট পাইলট হাইস্কুল ও টেকনিক্যাল কলেজের মাঠটি বছরের ছয় মাস জলাবদ্ধ থাকে। এই মাঠে জমে থাকা বৃষ্টির পানি সরানোর ব্যবস্থা না থাকায় এ সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখানে খেলাধুলা ও শারীরিক কসরত করছে পারছে না।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, ১৯০৬ সালে প্রতিষ্ঠানটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। বর্তমানে এই শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এক হাজার ৪০০ শিক্ষার্থী আছে। এই প্রতিষ্ঠানের সীমানার মধ্যে ৭৫ হাজার বর্গমিটার আয়তনের একটি মাঠ আছে। মাঠটিতে শিক্ষার্থীরা খেলাধুলা ও শারীরিক কসরত করত। জাতীয় পর্যায়ের সব অনুষ্ঠান, আন্তজেলা ও উপজেলা পর্যায়ের ক্রীড়া প্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হতো। পাঁচ বছর আগে এর পূর্ব ও দক্ষিণে অপরিকল্পিতভাবে বসতঘর ও পশ্চিমে পাকা সড়ক নির্মাণ করায় মাঠটি নিচু হয়ে গেছে। এ কারণে বৃষ্টি হলেই এখানে পানি জমে যায়। পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা না থাকায় জুন থেকে নভেম্বর মাস পর্যন্ত এটি তিন ফুট পানিতে নিমজ্জিত থাকে। ফলে এ সময় এখানে খেলাধুলাসহ সব ধরনের কার্যক্রম বন্ধ থাকে।কয়েকজন শিক্ষার্থী জানায়, পাঠদান শুরু হওয়ার আগে তাদের শারীরিক কসরত এখানে হতো। বর্তমানে জায়গা না থাকায় শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের ভেতরে স্বল্প জায়গায় ঠাসাঠাসি করে শারীরিক কসরত করা হচ্ছে। এতে অনেক শিক্ষার্থী অংশ নিতে পারছে না।শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির প্রাক্তন ছাত্র নজরুল ইসলাম বলেন, ‘এই মাঠে টিফিন বিরতির সময় এবং বিকেলে খেলাধুলা করেছি। এ ছাড়া পৌর এলাকার কিশোর ও তরুণেরা এখানে ফুটবলসহ নানা খেলাধুলা করত। মাঠে পানি জমে থাকায় এখন এসব বন্ধ রয়েছে।’শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অধ্যক্ষ মীর আবদুল হান্নান বলেন, ‘মাঠটি শহরের মধ্যে অবস্থিত। আশপাশের স্থান উঁচু হওয়ায় বৃষ্টির পানি বের করার ব্যবস্থা নেই। এ কারণে বছরের ছয় মাসই এটি পানিতে নিমজ্জিত থাকে। মাঠটি উঁচু করতে প্রয়োজনীয় অর্থ বরাদ্দ চেয়ে যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দপ্তরে আবেদন করেছি। এখন পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি।’উল্লাপাড়া পৌরসভার মেয়র বেল্লাল হোসেন জানান, এর আগে ওই মাঠ থেকে সেচযন্ত্রের মাধ্যমে কয়েকবার পানি বের করে দেওয়া হয়েছে। ওই স্থানেপৌরসভার নালা রয়েছে। কিন্তু এটি মাঠের চেয়েও উঁচুতে। এ কারণে ওই নালা দিয়ে পানি সরছে না। মাঠটি মাটি দিয়ে ভরাট না করা পর্যন্ত এই সমস্যার সমাধান হবে না।পরিচালনা কমিটির সভাপতি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শামীম আহমেদ জানান, মাঠটি ওই এলাকার রাস্তা থেকে চার ফুট নিচু। তাই মাটি দিয়ে ভরাট করা ছাড়া মাঠের জলাবদ্ধতা দূর করা যাবে না। সব স্থান মাটি দিয়ে ভরাট করতে অনেক টাকার প্রয়োজন। এত টাকা একবারে জোগাড় করা সম্ভব হচ্ছে না। তবে এটি পর্যায়ক্রমে ভরাট করা হবে।কিশোরগঞ্জের অষ্টগ্রাম উপজেলার সাভিয়া নগর হক সাহেব উচ্চবিদ্যালয়ের মাটি ভরাট প্রকল্পের পাঁচ মেট্রিক টন গম লোপাট হয়েছে। বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সাবেক দুজন সদস্য মেরাজ মিয়া ও শাহজাহান ভুয়া প্রকল্প দেখিয়ে ওই গম আত্মসাত্ করেছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আসমত আলী অষ্টগ্রাম উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার (পিআইও) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।পিআইও এবং বিদ্যালয়ের শিক্ষক সূত্রে জানা গেছে, সম্প্রতি সাভিয়া নগর হক সাহেব উচ্চবিদ্যালয়ের মাটি ভরাট প্রকল্পের জন্য বিদ্যালয়ের সহকারী প্রধান শিক্ষক আসমত আলীকে সভাপতি ও শিক্ষক জালাল আহাম্মেদকে সাধারণ সম্পাদক করে পাঁচ সদস্যের প্রকল্প কমিটি করা হয়।সরকারি নিয়ম অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্রও জমা দেওয়া হয়। কিন্তু আসমত আলী পিআইও কার্যালয়ে প্রকল্পের উত্তোলন আদেশ (ডিও) আনতে গিয়ে জানতে পারেন, বিদ্যালয়ের বিলুপ্ত পরিচালনা কমিটির দুজন সদস্য ভুয়া প্রকল্প দাখিল করে ডিও নিয়ে গেছেন।মেরাজ মিয়া ও শাহজাহানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তাঁরা এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি। পিআইও আসাদুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, এ ব্যাপারে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরে পণ্যভর্তি ১০টি কনটেইনার আটক করেছেন শুল্ক-গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা। পশুখাদ্য ঘোষণা দিয়ে গ্লুকোজ আমদানি করে শুল্ক ফাঁকির অভিযোগে গতকাল শুক্রবার রাতে এসব কনটেইনার খালাস স্থগিত করা হয়।কোনো এলাকার ট্রান্সফরমার বিকল হলে পুনঃস্থাপন করতে বিদ্যুৎ বিভাগের দুই চাকার ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার সংযোজন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ সচল রাখা হয়। তখন ঘণ্টা খানেকের জন্য ব্যবহূত হয় ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার।কিন্তু সিলেট নগরের শিবগঞ্জ-সোনারপাড়া ও রায়নগর এলাকায় ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার ব্যস্ততম রাস্তায় রেখে উন্মুক্ত সংযোগের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রায় এক মাস ধরে চলছে।বৈদ্যুতিক খুঁটির ট্রান্সফরমার পুনঃস্থাপন না হওয়ায় রাস্তার ট্রান্সফরমারও অপসারণ হচ্ছে না। ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে ওই দুই এলাকার স্কুলশিক্ষার্থীসহ পথচারীরা। সিলেট বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের ট্রান্সফরমার শাখা সূত্র জানায়, অনেকটা ভ্যানগাড়ির আদলে ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার স্থাপন সাধারণত ঘণ্টা খানেকের জন্য হয়। জরুরি প্রয়োজনে ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার দিয়ে বিদ্যুৎ সরবরাহের সময় ক্ষণ বাড়ানো হয়। তবে কোনোভাবে ২৪ ঘণ্টার বেশি কোথাও রাখার নিয়ম নেই।স্থানীয়রা জানান, শিবগঞ্জ-সোনারপাড়া এলাকায় গত সেপ্টেম্বর মাসের প্রথম সপ্তাহে আকস্মিক বজ্রপাতে এলাকার বৈদ্যুতিক খুঁটিতে থাকা ট্রান্সফরমার বিকল হয়। পুরো এলাকা একদিন বিদ্যুৎবিহীন থাকার পর বিকল ট্রান্সফরমার অপসারণ করে ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার স্থাপন করে বিদ্যুৎ সরবরাহ দেওয়া হয়। একইভাবে দুই সপ্তাহ আগে রায়নগর এলাকায় ট্রান্সফরমার বিকল হলে একটানা প্রায় ২০ ঘণ্টা বিদ্যুৎবিহীন ছিল এলাকা। এলাকাবাসী সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ শুরু করলে সেখানেও বসানো হয় ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার। শিবগঞ্জ-সোনারপাড়া ও রায়নগর এলাকায় রাস্তার এক পাশে একধরনের খাঁচার বেষ্টনী দিয়ে ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার রাখা। তাতে বিদ্যুতের সংযোগ দেওয়া হয়েছে উন্মুক্তভাবে। দুই এলাকায়ই মূল রাস্তায় ভ্রাম্যমাণ ট্রান্সফরমার রাখায় যানবাহন চলাচলও বিঘ্নিত হচ্ছে। পাশাপাশি কিন্ডারগার্টেনসহ একাধিক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা পথ চলতে গিয়ে ঝুঁকির মুখে পড়ছে। শিবগঞ্জ-সোনারপাড়ায় হিলসিটি একাডেমি স্কুল ও সেন্ট্রাল উইমেন্স কলেজ এবং রায়নগরে গ্রিন বেঙ্গল স্কুল ও শাহমীর সরকারি প্রাথমিক স্কুল থাকায় শিক্ষার্থীদের ট্রান্সফরমারের গা ঘেঁষে পথ চলতে দেখা যায়। ট্রান্সফরমারে কোনো সতর্কতা নির্দেশক না থাকায় কৌতূহলীদের উঁকিঝুঁকি মারতেও দেখা যায়।সোনারপাড়ার বাসিন্দা আলাউদ্দিন আহমদ বলেন, রাস্তায় ট্রান্সফরমার থাকায় পাশ দিয়ে যেতে বড়দেরই ভয় লাগে। স্কুলগামী ছোট শিশুদের নিয়ে এ ভয় আরও বেশি। শাহমীর স্কুলের পঞ্চম শ্রেণীর ছাত্র সমর পারভেজ জানায়, স্কুলে যেতে প্রতিদিনই তার বাবা-মা রাস্তার পাশে রাখা লোহার খাঁচার কাছাকাছি দিয়ে যেতে বারণ করে দেন। পারভেজ বলে, ‘রাস্তাত বাইর অইলেই ডর (ভয়) লাগে!’ সিলেটের বিদ্যুৎ বিতরণ বিভাগ-২-এর (ট্রান্সফরমার) নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ নজরুল ইসলাম স্বীকার করেন এগুলো জরুরি অবস্থা মোকবিলায় ঘণ্টা খানেকের জন্য এভাবে রাস্তায় বসানো হয়।তিনি জানান, ওই দুই এলাকার বিকল ট্রান্সফরমারগুলো মেরামত করার জন্য ওয়ার্কশপে পাঠানো হয়েছে। এক সপ্তাহের মধ্যে ট্রান্সফরমারগুলো পাওয়া যাওয়ার কথা। তখন রাস্তার ট্রান্সফরমার তুলে নেওয়া হবে।ফেনীর দাগনভূঞা উপজেলার আটটি ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ের সব কটিই ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়েছে। এগুলো পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হলেও চারটি কার্যালয় ঝুঁকি নিয়েই ব্যবহার করছেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। এ ছাড়া এসব কার্যালয়সংলগ্ন জায়গা আশপাশের লোকজন দখল করে নিচ্ছেন বলে অভিযোগ উঠেছে।দাগনভূঞা উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় সূত্রে জানা যায়, ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ভবনগুলো ১৯৬০ সালের দিকে তৈরি করা হয় বীজ সংরক্ষণাগার হিসেবে ব্যবহারের জন্য। পরবর্তী সময়ে এগুলো উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় ও আবাসন হিসেবে ঘোষণা করা হয়। গত ৫৩ বছরে সংস্কার না করায় এসব ভবন ঝুঁকিপূর্ণ ও ব্যবহারের অযোগ্য হয়ে পড়ে। এ কারণে জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কার্যালয় থেকে এসব ভবন পরিত্যক্ত ঘোষণা করা হয়।সূত্র জানায়, বর্তমানে প্রতিটি ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের একটি কক্ষ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয় হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হলেও আবাসনের কোনো ব্যবস্থা করা হয়নি। থাকার মতো বিকল্প ঘর না পাওয়ায় মাতুভূঞা, রামনগর, এয়াকুবপুর ও জায়লস্কর ইউনিয়ন কৃষি কর্মকর্তারা ঝুঁকি নিয়েই পরিত্যক্ত ভবনগুলোতে এখনো দাপ্তরিক কাজ ও বসবাস করছেন। মাতুভূঞা ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তার কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ভবনের ছাদ, কক্ষ ও কর্মকর্তার থাকার ঘরের বিভিন্ন স্থানে ফাটল ধরেছে। খসে পড়ছে পলেস্তারা। জ্যেষ্ঠ উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুর রব জানান, যেকোনো সময় দুর্ঘটনার আশঙ্কা সত্ত্বেও বিকল্প ব্যবস্থা না থাকায় তিনি এখানে দাপ্তরিক কাজ করছেন এবং পরিবার-পরিজন নিয়ে বসবাস করছেন। একই অবস্থা ইয়াকুবপুর ইউনিয়ন উপসহকারী কৃষি কার্যালয়ের।পূর্বচন্দ্রপুর উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মারুফ জানান, ভবনগুলো সংস্কার কিংবা নতুন ভবন নির্মাণ করা না হলে কর্মকর্তারা এলাকায় থাকতে চাইবেন না। এতে কৃষকেরা কাঙ্ক্ষিত সেবা থেকে বঞ্চিত হবেন।এদিকে সিন্দুরপুর, রাজাপুর, পূর্ব চন্দ্রপুর ও দাগনভূঞা সদর ইউনিয়ন কৃষি কার্যালয়গুলো রয়েছে অরক্ষিত অবস্থায়। সরেজমিন দেখা যায়, পূর্ব চন্দ্রপুর ইউনিয়নের বৈরাগীরহাটে অবস্থিত পরিত্যক্ত কৃষি কার্যালয়কে বাজারের ব্যবসায়ীরা ময়লা-আবর্জনার ভাগাড় হিসেবে ব্যবহার করছেন।উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা অশোক কুমার রায় জানান, উপসহকারী কৃষি কার্যালয়গুলোর দুরবস্থার কথা ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে লিখিতভাবে জানানো হয়েছে।জেলা কৃষি সম্প্রসারণ কর্মকর্তা সুনীল চন্দ্র ধর কৃষি কার্যালয়গুলো ঝুঁকিপূর্ণ ও পরিত্যক্ত ঘোষণা করার কথা স্বীকার করেন। তিনি বলেন, সমস্যাগুলো সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এ ছাড়া সীমানা নির্ধারণ করে সরকারি সম্পত্তি দখলমুক্ত রাখার ব্যবস্থা করা হবে।কুমিল্লা দোকান মালিক সমিতি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আতিক উল্লাহ খোকনকে গ্রেপ্তারের প্রতিবাদে গতকাল শনিবার ভোর ছয়টা থেকে সন্ধ্যা ছয়টা পর্যন্ত ওষুধের দোকান, রেস্তোরাঁ ও কাঁচাবাজারসহ সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ ছিল। এতে নগরের বাসিন্দারা চরম দুর্ভোগের শিকার হয়।জানা গেছে, গত বুধবার দিবাগত রাত সোয়া একটার দিকে কুমিল্লা নগরের কান্দিরপাড় পিপাসা মিষ্টি দোকানের সামনে থেকে র্যাব সদস্যরা আতিক উল্লাহকে আটক করে নিয়ে যান। পরদিন তাঁকে আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়। তাঁর মুক্তির দাবিতে দোকান মালিক সমিতি ফেডারেশন গতকাল সকাল থেকে টানা ৩০ ঘণ্টা সব ধরনের ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার ঘোষণা দেয়। গতকাল বিকেলে এ ব্যাপারে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে ব্যবসায়ীদের বৈঠক হয়। এতে সন্ধ্যা ছয়টার পর থেকে আজ রোববার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ওষুধের দোকান, রেস্তোরাঁ ও কাঁচাবাজার খোলা রাখার সিদ্ধান্ত হয়। তবে অন্যান্য ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত বহাল থাকে।গতকাল সকালে সরেজমিনে দেখা গেছে, কুমিল্লা নগরের রাজগঞ্জ, চকবাজার, নিউমার্কেট, রানীরবাজার ও বাদশা মিয়ার বাজারের সব কাঁচাবাজার এবং কান্দিরপাড়ের হোটেল ডায়না, কস্তুরি, কুমিল্লা সিটি, আমানিয়া ও মিনার্ভাসহ সব রেস্তোরাঁ বন্ধ।নগরের মোগলটুলি এলাকার বাসিন্দা হাবিবুর রহমান বলেন, ‘বাসায় মেহমান এসেছে। মাছ, মাংস কিনতে এসে দেখি সবকিছু বন্ধ। হোটেলও বন্ধ। কারফিউর সময়ও এমনটা দেখা যায়নি।’কুমিল্লা জেলা প্রশাসক মো. তোফাজ্জল হোসেন মিয়া বলেন, ‘গতকাল বিকেল চারটায় আমার দপ্তরে ব্যবসায়ীদের ডেকে আনি। এরপর ব্যবসায়ীরা সন্ধ্যা থেকেই ওষুধের দোকান, রেস্তোরাঁ ও কাঁচাবাজার খুলে দেওয়ার আশ্বাস দেন।’
সংবাদ সম্মেলন : ‘সুস্থ থাকুন, প্রতিদিন হাঁটার ও সাইকেল চালানোর অভ্যাস করুন’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলন ও র‌্যালি বেলা ১১টায় প্রেসক্লাবে।সিভিল সার্জন কার্যালয়: জলাতঙ্কবিষয়ক সংবাদ সম্মেলন, বেলা ১১টায় সিভিল সার্জনের কার্যালয়ে।শুধু ফুটবলটাই ভালো খেলেন না আন্দ্রে শুরলে, গাইতেও পারেন ভালো। জার্মান এই ফুটবলার সতীর্থ লুইস হোল্টবির সঙ্গে একবার ডুয়েট গেয়েছিলেন টেলিভিশনে।জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার পর গত সোমবার রাত থেকে মঙ্গলবার পর্যন্ত বগুড়ায় বিভিন্ন স্থানে সহিংসতা এবং উপজেলা নির্বাচন কার্যালয় ও সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবনে অগ্নিসংযোগ, রেলস্টেশনে হামলা এবং যুবদলের নেতা ইউসুফ হত্যার ঘটনায় এ পর্যন্ত ছয়টি মামলা হয়েছে। এসব মামলায় ১৮ দলের ১১৩ নেতা-কর্মীর নামে ও অজ্ঞাত আরও এক হাজার ৮৭০ জনকে আসামি করা হয়েছে।সংশ্লিষ্ট থানা সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী তফসিল ঘোষণার পর সোমবার রাত আটটার দিকে পৌর শহরে ১৮ দলের মিছিল বের হলে সাত মাথায় এবং থানা মোড়ে পুলিশের সঙ্গে মিছিলকারীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় ককটেল বিস্ফোরণে একজন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আহত হন। সাত মাথায় সংঘর্ষের ঘটনায় সদর থানার উপপরিদর্শক (এসআই) কালাচাঁদ ঘোষ বাদী হয়ে ৪৯ জনের নাম উল্লেখ ও অজ্ঞাত আরও ৮০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন। এ ছাড়া থানা মোড়ে সংঘর্ষ এবং সদর থানা পুলিশের ওপর ককটেল নিক্ষেপের অভিযোগে একই ধারায় এসআই আসলাম হোসেন বাদী হয়ে ৫০ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ৬০০ জনের বিরুদ্ধে পৃথক একটি মামলা করেন।একই দিন রাত ১০টার দিকে আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের সরকারি বাসভবনে অগ্নিসংযোগের ঘটনায় অধ্যক্ষ দীপকেন্দ্র নাথ দাস ১৪ জনের নামসহ অজ্ঞাত আরও ৫০ জনের বিরুদ্ধে গত মঙ্গলবার রাতে সদর থানায় মামলা করেন। গত মঙ্গলবার দুপুরে শহরের মাটিডালি এলাকায় সদর উপজেলা পরিষদে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয়ে আগুন দেওয়ার ঘটনায় উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বাদী হয়ে অজ্ঞাত সাত থেকে আটজনের বিরুদ্ধে মামলা করেন।ওই দিন বিকেলে শহরের বনানী এলাকায় পুলিশের সঙ্গে সংঘর্ষে যুবদলের নেতা ইউসুফ নিহত হওয়ার ঘটনায় শাজাহানপুর থানায় অজ্ঞাত ৪০০ জনকে আসামি করে মামলা হয়েছে। মঙ্গলবার রাতে বগুড়া রেলস্টেশনে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনায় রেলস্টেশনের মাস্টার অজ্ঞাতনামা ১০ থেকে ১২ জনের বিরুদ্ধে রেলওয়ে থানায় মামলা করেছেন।কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার বড় হাওরের বিভিন্ন এলাকায় নির্বিচারে অতিথি পাখি শিকার করা হচ্ছে। জাল ফেলে এবং বিভিন্ন ধরনের ফাঁদ পেতে পাখি ধরা হচ্ছে। শিকারিরা প্রতিদিন ভোরে কয়েক শ অতিথি পাখি স্থানীয় বাজারে বিক্রি করছেন। কিন্তু প্রশাসন অতিথি পাখি নিধন বন্ধে কোনো ব্যবস্থা নিচ্ছে না।এলাকাবাসী ও শিকারি সূত্রে জানা যায়, দুই শতাধিক শিকারি বড় হাওরে অতিথি পাখি শিকারি করেন। জাতভেদে প্রতিটি পাখি ৩০০ থেকে ৫০০ টাকায় বিক্রি করা হয়। মাঝেমধ্যে শহর থেকে পাইকারেরা এসে পাখি কিনে নিয়ে যান।পাখি শিকারি আলাল মিয়া ও রসুল মিয়া জানান, তাঁরা প্রায় পাঁচ বছর ধরে জাল ফেলে পাখি শিকার করে আসছেন। মাঝেমধ্যে এসব পাখি প্রশাসনের কর্তাব্যক্তিদের বাসায়ও দেন তাঁরা।উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের আশরাফুজ্জামান চৌধুরী বলেন, শীতে প্রতিবছর হাওরে বিপুলসংখ্যক অতিথি পাখি আসে। ঘন কুয়াশা ও প্রচণ্ড শীতের মধ্যে শিকারিরা ফাঁদ পেতে পাখি শিকার করে থাকে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর পক্ষে কয়েক শ মাইল আয়তনের হাওর পাহারা দেওয়া সম্ভব নয়। এ জন্য জনসচেতনতা দরকার। সরকারি-বেসরকারি প্রতিষ্ঠান হাওরবাসীকে সচেতন করলে পাখি নিধন বন্ধ হবে বলে আশরাফুজ্জামান মনে করেন।মিঠামইন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নাসির উদ্দিন ভূঁইয়া বলেন, পাখি শিকার করা আইনত দণ্ডনীয় অপরাধ। সুনির্দিষ্ট অভিযোগ পাওয়া গেলে শিকারিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মিঠামইন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. সাদেকুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, অতিথি পাখি নিধন বন্ধে সামাজিকভাবে প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে।
ঠাকুরগাঁও সদর উপজেলার জামালপুর ইউনিয়নের রামপুর গ্রামের তৈবুর রহমান হত্যা মামলার আসামিপক্ষের লোকজন বাদীকে প্রাণনাশের হুমকি দিচ্ছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও সদর থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেছেন মামলার বাদী ও নিহত তৈবুর রহমানের স্ত্রী আইরিন আক্তার।আইরিন আক্তার বলেন, ‘স্বামী হত্যার বিচার চাইতে গিয়ে আমি এখন নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। আসামি আইয়ুব আলীর দুই ভাই হারুন অর রশিদ ও আবু দাউদ আমাকে ছেলেমেয়েসহ মেরে ফেলার হুমকি দিচ্ছেন।’ তিনি অভিযোগ করেন, গত রোববার হারুন বাড়িতে এসে তাঁকে মামলা প্রত্যাহার করতে চাপ দেন। এরপর বুধবার শিবগঞ্জ হাটে তাঁর বাবা ও দুলাভাইকে মামলা তুলে নিতে বলেন। সর্বশেষ বৃহস্পতিবার ঠাকুরগাঁও জেলা ও দায়রা জজ আদালত চত্বরেও হারুন তাঁকে মেরে ফেলার হুমকি দেন।ঠাকুরগাঁও সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ফিরোজ খান জানান, আইরিন আক্তারের অভিযোগ তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।পুলিশ ও এলাকাবাসী সূত্র জানায়, তৈবুরের সঙ্গে জমি নিয়ে পাশের বাড়ির আইয়ুব আলীর বিরোধ ছিল। আইয়ুব আলী ১৯ সেপ্টেম্বর রাত আটটার দিকে কুটিমারী বিলে মাছ ধরতে যাওয়ার কথা বলে তৈবুরকে বাড়ি থেকে ডেকে নেন। রাত নয়টার দিকে তিনি এসে আইরিনের কাছে জানতে চান, তৈবুর বাড়িতে ফিরেছেন কি না। এরপর তিনি বিল থেকে তৈবুরকে ডেকে আনার কথা বলে চলে যান। বিলে গিয়েই তিনি তৈবুরকে মেরে ফেলা হয়েছে বলে চিৎকার-চেঁচামেচি শুরু করেন। ঘটনা জানতে পেরে আইরিনের সন্দেহ হয়। এরপর আইরিন পুলিশে খবর দেন। রাত ১১টার দিকে পুলিশ তৈবুরের লাশ উদ্ধার এবং ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে আইয়ুব আলীকে আটক করে।ঢাকার গুলশান দুই নম্বর থেকে বারিধারার দিকে এগোলে অস্ট্রেলীয় দূতাবাসের ঠিক উল্টো দিকেই রেস্তোরাঁ সল্টজ। বিশাল গাড়িবারান্দার জায়গা নিয়ে এখানটায় অবশ্য দুটো রেস্টুরেন্ট। আপনি যদি সামুদ্রিক খাবারের আসল সমঝদার হন, তাহলে চলে আসুন সল্টজে।ঢুকতেই মনে হবে রেস্তোরাঁ নয়, এসে পড়েছেন কোনো বোম্বেটে জাহাজে। মাথার ওপরে দুটো নৌকা উল্টো ঝুলে আছে। সেখান থেকে বের হচ্ছে নানান রঙের আলো। ভেতরেও সেই সাজসজ্জা বহাল। সঙ্গে যোগ হয়েছে জাল— হ্যাঁ, মাছ ধরা জাল দিয়ে পুরো অন্দর যেন মোড়ানো। টেবিলের কাচের নিচে আপনাকে অভ্যর্থনা জানাবে শামুক ঝিনুক—কত কী!এর স্বত্বাধিকারী ইফতেখার আহমেদ খান জানালেন, ২০০০ সালে প্রথম গুলশানের ৩৭ নম্বর সড়কে এটি খোলা হয়। বর্তমান জায়গায় তাঁরা চলে আসেন ২০০৩ সালে।সল্টজ পুরোপুরি সামুদ্রিক খাবারের রেস্তোরাঁ। ২-৩ কেজি ওজনের লবস্টার এখানে প্রতিদিনই পাওয়া যায়। এ ছাড়া রেড স্ন্যাপার, ভেটকি, সুরমা মাছ, কাটল ফিশ, দেশি স্কুইড, রুপচাঁদা, ম্যাকারেল, টুনা, সামুদ্রিক কাঁকড়া ইত্যাদি এখানে পাবেন লোভনীয় স্বাদে। কক্সবাজার থেকে প্রতিদিন এসব মাছ নিয়ে আসা হয় তাদের রসুইঘরে। এ ছাড়া বিদেশি মাছের মধ্যে ট্রাউট, স্যামন, স্ক্যালপস, বড় স্কুইড বা অক্টোপাস পাবেন। মাছ খেতে না চাইলে গ্রিল চিকেন, স্টেক ইত্যাদি চেখে দেখতে পারেন।খোলা একটা বারান্দা আছে এখানটায়। প্রতিদিন সকাল সাড়ে ১১টা থেকে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত খোলা থাকে এটি। তবে মাঝখানে বেলা তিনটা থেকে সাড়ে ছয়টা পর্যন্ত বন্ধ থাকে।বগুড়ায় সরকারি আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের বাসভবনে ককটেল হামলা, অগ্নিসংযোগ ও গাড়ি পোড়ানোর প্রতিবাদে গতকাল বুধবার ক্যাম্পাসে ক্যালো ব্যাজ ধারণ ও মৌন মিছিল করেছেন শিক্ষক-কর্মচারীরা। এদিকে ওই ঘটনায় অধ্যক্ষের দায়ের করা মামলায় নেতা-কর্মীদের আসামি করায় বিকেলে কলেজে বিক্ষোভ করেছে ছাত্রশিবির।কলেজ সূত্রে জানা যায়, গতকাল ১৮-দলীয় জোটের হরতাল থাকায় শহরে মৌন মিছিল ও জেলা প্রশাসক কার্যালয়ে স্মারকলিপি প্রদান কর্মসূচি স্থগিত করে শিক্ষক পরিষদের পক্ষ থেকে বেলা ১২টায় কলেজ ক্যাম্পাসে মৌন মিছিল বের করা হয়। এতে কলেজের কর্মচারী সমিতিও যোগ দেয়। মিছিল শেষে জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। মিছিল শেষে শিক্ষক পরিষদের নেতারা ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে প্রশাসন ব্যর্থ হলে কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি ঘোষণা করবেন বলে জানান। এদিকে অধ্যক্ষের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কলেজে অস্থায়ী ক্যাম্প স্থাপন করেছে পুলিশ।অধ্যক্ষ দীপকেন্দ্র নাথ দাস বলেন, হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনায় ছাত্রশিবিরের নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের পর থেকেই তাঁকে মুঠোফোনে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি তিনি মৌখিকভাবে পুলিশ কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন।এদিকে বিকেলে কলেজ চত্বরে বিক্ষোভ-সমাবেশে ছাত্রশিবির অভিযোগ করে, অধ্যক্ষ এই কলেজে যোগদানের পর থেকেই ছাত্রলীগের সঙ্গে আঁতাত করে আসছেন। ছাত্রলীগের একটি পক্ষ অধ্যক্ষের বাসায় হামলা চালিয়ে শিবিরকে ফাঁসাতে চাইছে। অবিলম্বে এই মামলা প্রত্যাহার করা না হলে ছাত্র ধর্মঘটসহ কঠোর আন্দোলনের কর্মসূচি দেওয়া হবে বলেও জানানো হয়। ২৫ নভেম্বর রাতে আজিজুল হক কলেজের অধ্যক্ষের বাসায় ককটেল হামলা ও অগ্নিসংযোগের ঘটনা ঘটে।সৃজনশীল প্রশ্নোত্তরএকটি ফটোগ্রাফপ্রিয় শিক্ষার্থীরা, আজ বাংলা ১ম পত্রের ‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতা থেকে একটি সৃজনশীল প্রশ্নোত্তর দেওয়া হলো।চিঠিটা তার পকেটে ছিলো,ছেঁড়া আর রক্তে ভেজা...   ...   ...মা পড়ে আর হাসে“তোর ওপর রাগ করতে পারি।”নারকেলের চিড়া—কোটে,উড়কি ধানের মুড়কি ভাজেএটা-সেটা আরো কত কি।তার খোকা যে বাড়ি ফিরবে।ক্লান্ত খোকা।ক. ‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতাটির উত্স কী?খ. ‘বাজখাঁই’ বলতে কী বোঝানো হয়েছে?গ. অনুচ্ছেদের চিঠি এবং ‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতার ফটোগ্রাফের সাযুজ্য ব্যাখ্যা করোঘ. প্রতীক্ষারত মা এবং পুত্রহারা পিতার অনুভূতির তুলনা করো।উত্তর: ক. একটি ফটোগ্রাফ কবিতার উত্স ‘এক ফোঁটা কেমন অনল’।উত্তর: খ. ‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতায় কবি শামসুর রাহমান ‘বাজখাঁই’ শব্দটি দ্বারা রুক্ষ কঠিন বুঝিয়েছেন। যদিও শব্দটি সাধারণত উচ্চ ও কর্কশ অর্থে ব্যবহূত হয়ে থাকে।‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতায় বেদনাহত ও শোকার্ত এক পিতা তিন বছর আগে তাঁর আদরের ছেলেকে হারিয়েছেন। সময়ের ব্যবধানে মানুষ শোকপূর্ণ মনোবৃত্তি কীভাবে পরিবর্তিত হয়ে যায় তা উপস্থাপন করতে গিয়ে কবি তিন বছর আগে ঘটে যাওয়া একটি মর্মস্পর্শী ঘটনার উল্লেখ করেছেন। এ কবিতায় একদা কোনো এক পিতার বাড়ির ড্রয়িংরুমে সাদা দেয়ালে টাঙানো ছিল তাঁর মৃত ছেলের একটি ফটোগ্রাফ। বাড়িতে আগত অতিথি বন্ধুর জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি নিজের প্রয়াত ছেলের ফটোগ্রাফ দেখিতে মৃত্যুকাহিনি শোনালেন। অতিথিকে উদ্দেশ করে পিতা অত্যন্ত সহজ ও সাবলীলভাবে ঘটনা বলে গেলেন। সে বর্ণনায় শোকের কোনো ভাবানুভূতি রেখাপাত করেনি। এতে করে পিতা নিজেই অবাক হলেন। মাত্র তিন বছরের ব্যবধানে তাঁর হূদয়ের শোকের বেদনার নদী শুকিয়ে যাওয়ার ঘটনাটি বাজখাঁই বলে মনে হয়েছে।উত্তর: গ. অনুচ্ছেদের চিঠি এবং ‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতার ফটোগ্রাফের মূল কথা হলো পুত্র শোক। অনুচ্ছেদের চিঠিটি পুলিশের গুলিতে নিহত এক পুত্রের মাকে উদ্দেশ করে লেখা জীবনের শেষ চিঠি। যে চিঠি পুত্রহারা মা পাঠ করেন আর কান্নায় ভেঙে পড়েন। অপর দিকে কবিতায় উল্লিখিত ফটোগ্রাফটিও কোনো এক শোকার্ত পিতার অকাল প্রয়াত পুত্রের। যে ছবিটি পিতার মনে পুত্রশোক জাগিয়ে তোলে।অনুচ্ছেদে উদ্ধৃত কবিতাংশটুকু যে কবিতা থেকে নেওয়া হয়েছে তা বায়ান্নের ভাষা আন্দোলনে শহীদদের প্রসঙ্গে লেখা। উদ্ধৃত পত্রটিতে পুলিশের গুলিতে নিহত সন্তানের জন্য মায়ের মনের তীব্র বেদনার কথা বিবৃত হয়েছে। শহরে প্রবাসী ছেলে মায়ের চিঠি পেয়েছে, গাঁয়ে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য। সেই চিঠি পকেটে নিয়েই রাজপথে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। যে কারণে মায়ের প্রতীক্ষার শেষ নেই। অপর দিকে ‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতার পিতার অন্তরে ও দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা ফটোগ্রাফটি দেখে সুপ্ত পুত্রশোক জাগ্রত হয়ে ওঠে।অনুচ্ছেদে বর্ণিত ক্লান্ত খোকা যেমন মায়ের বুকে ফিরে না এসে মাকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে রাখে, তেমনি দেয়ালে ঝুলিয়ে রাখা ফটোগ্রাফের সন্তানটিও বাবার বুকে ফিরে আসে না। কোনো কথা বলে না, নিষ্পলক তাকিয়ে থেকে পিতাকে শোকের সাগরে ভাসিয়ে রাখে। আলোচনার শীর্ষবিন্দু হলো পুত্রশোক, যা অনুচ্ছেদের চিঠি এবং ‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতার ফটোগ্রাফের মূল কথা।উত্তর: ঘ. প্রতীক্ষারত মায়ের পরিচয় হলো তিনি একজন ভাষাশহীদের মা, আর পুত্রহারা পিতা বলতে বোঝানো হয়েছে ‘একটি ফটোগ্রাফ’ কবিতার অকাল প্রয়াত পুত্রের বাবাকে। শহরে অধ্যয়নরত ছেলে মায়ের চিঠি পেয়েছে, গাঁয়ে মায়ের কাছে যাওয়ার জন্য সে চিঠি পকেটে নিয়েই ভাষা আন্দোলনে রাজপথে পুলিশের গুলিতে নিহত হয়েছে। অথচ মা তাঁর পুত্রের প্রতীক্ষায় পথ চেয়ে রয়েছেন। অপর দিকে তিন বছর আগে পানিতে ডুবে মারা যাওয়া শিশুসন্তানের ফটোগ্রাফ দেখে পিতা প্রায়ই শোকাতুর হয়ে পড়েন।ছেলের বাড়িতে আসার জন্য চিঠি পাঠিয়ে মা তাঁর ছেলের জন্য নানা রকমের খাদ্য তৈরি করে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু মরে যাওয়া ছেলে ফিরে আসবে কী করে। যে কারণে খোকা তার মায়ের কোলে ফিরে আসে না। অথচ মায়ের প্রতীক্ষার শেষ নেই। এটা মায়ের সহজাত স্বভাব। খোকা তার মায়ের কোলে আর কোনো দিন ফিরে না এলেও মা তাঁর খোকার প্রতীক্ষায় আমৃত্যু প্রহর গুনবেনই। অপর দিকে বছর তিনেক আগে কোনো এক কাকডাকা গ্রীষ্মের দুপুরে গ্রামের পুকুরে ডুবে মারা যাওয়া এক পুত্রসন্তানের পিতা পুত্রের একটি ফটোগ্রাফ দেয়ালে টাঙিয়ে রেখেছেন। ফটোগ্রাফটির দিকে তাকালেই পিতার মনে হয়—ফ্রেমের থেকে ফটোগ্রাফটি নিষ্পলক দৃষ্টিতে সুন্দরভাবে চেয়ে আছে অবিরাম। দেয়ালের ছবিজুড়ে যেন অকাল প্রয়াত পুত্রের অস্তিত্ব। শোকাতুর পিতার  মন থেকে পুত্রশোকের অনুভূতি কখনো দূর হয় না।খোকার মা তাঁর বাড়ি ফেরার প্রতীক্ষায় শোকাতুর আর পিতা তাঁর অকাল প্রয়াত পুত্রের ফটোগ্রাফ দর্শনে শোকাতুর। মায়ের মনে এখনো তাঁর পুত্র ফিরে আসবে বলে বিরামহীন প্রতীক্ষা এবং পিতার মনে পুত্রের আর কোনো দিন ফিরে না আসার শোক। যে কারণে অনুভূতিতে কিছুটা হলেও ভিন্নতা রয়েছে এবং এ ভিন্নতা থাকা খুবই স্বাভাবিক।
দিনাজপুরের বিরামপুর উপজেলায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) সদস্যরা শরিফুল ইসলাম (১৬) নামের এক ভারতীয় কিশোরকে আটক করেছেন। এ ঘটনায় বিজিবি বিরামপুর থানায় মামলা করেছে।গত বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় বিরামপুরের দাউদপুর বিজিপি ক্যাম্পের কমান্ডার নায়েক সুবেদার আমির খসরু হাবিবপুর এলাকা থেকে শরিফুলকে আটক করেন। শরিফুল বিরামপুরের কাটলা-দাউদপুর সীমান্তসংলগ্ন ভারতের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলার হিলি থানার উত্তর জামালপুর গ্রামের শাহী ইমরান মণ্ডলের ছেলে। সে মালদহ মাদ্রাসায় লেখাপড়া করে বলে জানিয়েছে।আমির খসরু জানান, সম্প্রতি স্থানীয় বাসিন্দারা মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন, বিরামপুরের শিবপুর গ্রামের রেজোয়ান (২৩) নামের এক তরুণ যশোরের একটি মেয়েকে নিয়ে ভারতে পালিয়ে যান। তিনি আটক শরিফুলের খালাতো ভাই। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় শরিফুল বাংলাদেশে প্রবেশ করলে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়। আমির খসরু আরও জানান, যশোরের ওই মেয়েকে ভারতে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে ওই মেয়ের পরিবারের কারও লিখিত বা মৌখিক অভিযোগ তাঁরা পাননি।ক্রিকেট খেলতে গিয়ে লাশ হলেন দক্ষিণ আফ্রিকার এক ক্রিকেটার। ডারিন র‌্যানডালের মৃত্যু স্মরণ করিয়ে দিল ১৫ বছর আগে ভারতের সাবেক টেস্ট ক্রিকেটার রমণ লাম্বার মৃত্যুকে।১৯৯৮ সালে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগে আবাহনীর হয়ে ফরোয়ার্ড শর্ট লেগে ফিল্ডিং করছিলেন রমণ লাম্বা। বাঁহাতি স্পিনার সাইফুল্লাহর বলে মেহরাব হোসেনের শট লাম্বার মাথায় লেগে জমা হয় উইকেটকিপার খালেদ মাসুদের গ্লাভসে। হাসপাতালে নেওয়ার তিন দিন পর তাঁর মৃত্যু হয়।উইকেটকিপার ব্যাটসম্যান র‌্যানডাল অবশ্য অত সময় পাননি। পরশু ওল্ড সেলবোর্নিয়ানস ও ফোর্ট হেয়ার ইউনিভার্সিটির মধ্যকার বোর্ডার ক্রিকেট বোর্ড প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচে পুল করতে গিয়েছিলেন। হেলমেট পরা ছিলেন। তার পরও ব্যাটকে ফাঁকি দিয়ে বল তাঁর মাথায় আঘাত করে। সঙ্গে সঙ্গে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে অ্যালিসের স্থানীয় হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিৎসকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক উইকেটকিপার মার্ক বাউচারের টুইট, ‘দুঃখের সংবাদ। অন্য রকম একটা ছেলে ছিল ডারিন। ছেলেরা, জীবন খুবই ছোট! কোনো আগামী দিন নেই মনে করেই জীবন কাটাও।’ বোর্ডারের হয়ে চারটি প্রথম শ্রেণীর ম্যাচ ও চারটি লিস্ট ‘এ’ ম্যাচ খেলা র‌্যানডালের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে ক্রিকেট দক্ষিণ আফ্রিকা। ওয়েবসাইট।আদালতে সাক্ষ্য দিতে জয়পুরহাট থেকে বগুড়া শহরে এসে দুর্বৃত্তদের হামলায় গুরুতর আহত হয়েছেন পুলিশ কনস্টেবল রমজান আলী (৫০)। ধারালো অস্ত্র দিয়ে রমজানের শ্বাসনালি কেটে দিয়েছে তারা। তাঁর পেটেও ছুরিকাঘাত করা হয়েছে।শহরের ফুলদীঘি এলাকায় গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের পাশে হোটেল সিয়েস্তার সামনে দুর্বৃত্তরা রমজানের ওপর এই হামলা করে। তাঁকে প্রথমে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং পরে সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থার অবনতি ঘটলে গতকাল বুধবার দুপুরে এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে করে তাঁকে ঢাকায় পাঠানো হয়েছে।পুলিশ জানায়, রমজান আলী বগুড়া সদর থানা থেকে সম্প্রতি জয়পুরহাট সদর থানায় বদলি হয়ে যান। বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হক বলেন, আদালতে সাক্ষ্য শেষে রমজান আলী হোটেল সিয়েস্তার সামনে দাঁড়িয়ে চা পান করছিলেন। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই দুর্বৃত্তরা তাঁর ওপর ঝাঁপিয়ে পড়ে। তারা ধারালো অস্ত্র দিয়ে রমজানের স্বাসনালি কেটে দেয়। এ ছাড়া পেটেও ছুরিকাঘাত করে।মৌলভীবাজার-১ (বড়লেখা ও জুড়ী) আসনের আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থী মো. শাহাব উদ্দিনের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ পাওয়া গেছে। দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন উপলক্ষে জুড়ী উপজেলায় গতকাল শনিবার আইনশৃঙ্খলা-সংক্রান্ত বিশেষ সভায় এ অভিযোগ করেন জাতীয় পার্টির (জেপি) প্রার্থী আহমেদ রিয়াজ উদ্দিন।সভায় রিয়াজ উদ্দিন বলেন, ‘নির্বাচনী প্রচারণায় আমার প্রতিদ্বন্দ্বী শাহাব উদ্দিন সাহেব জুড়ী ও বড়লেখা থানার পুলিশের প্রটেকশন নিচ্ছেন। অথচ নির্বাচনী আচরণ বিধিমালার ১৪ নম্বর ধারায় উল্লেখ করা হয়েছে, তফসিল ঘোষণার পর সংসদ সদস্যরা সরকারি কোনো সুযোগ-সুবিধা পাবেন না।’ তিনি আরও জানান, ‘আমি নিরাপত্তাহীনতায় আছি। নির্বাচনে অংশ নেওয়ায় আমার ওপর বিএনপি ও জামায়াতের লোকজনের আক্রোশ রয়েছে। আমাকে প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হচ্ছে। আমার পোস্টার ছিঁড়ে ফেলা হচ্ছে। অথচ পুলিশ আমার খবরও রাখে না।’ আওয়ামী লীগের প্রার্থী শাহাব উদ্দিন আচারণবিধি লঙ্ঘন করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।বেলা সাড়ে ১১টার দিকে উপজেলা পরিষদ মিলনায়তনে সভা শুরু হয়। রিটার্নিং কর্মকর্তা ও মৌলভীবাজারের জেলা প্রশাসক মো. কামরুল হাসান সভায় সভাপতিত্ব করেন। ইউএনও মো. শহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় সভায় পুলিশ সুপার তোফায়েল আহমদ, উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এম এ মুমিত, জেপির প্রার্থী রিয়াজ উদ্দিন প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে তেহরানের ‘সুর বদল’কে স্বাগত জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। ইরানের বিতর্কিত পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে দেশটির সঙ্গে উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে এ মনোভাব প্রকাশ করা হয়েছে।গত এক প্রজন্মের মধ্যে ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে সবচেয়ে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক ছিল এটা। গত বৃহস্পতিবারের এ বৈঠকে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মোহাম্মদ জাভেদ জারিফের সঙ্গে আলোচনা করেন। ইরান ও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ১৯৮০ সালের পর থেকে এ পর্যন্ত এটাই সবচেয়ে আন্তরিকতাপূর্ণ বৈঠক বলে মনে করা হচ্ছে।১৯৭৯ সালে ইরানে ইসলামি বিপ্লব হয়। এর পর থেকেই দেশ দুটির মধ্যে কূটনৈতিক অচলাবস্থা চলে আসছে।বৈঠকের পর জন কেরি বলেন, তাঁরা তেহরানের ‘একেবারে ভিন্ন সুরে’ অভিভূত হয়েছেন। তবে এখনো অনেক প্রশ্ন রয়েছে, যেগুলোর উত্তর ইরানকে দিতে হবে।ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে পরবর্তী সরাসরি আলোচনা শুরু হবে আগামী ১৫ অক্টোবর থেকে সুইজারল্যান্ডের জেনেভা শহরে। সেই আলোচনা হবে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্য ও জার্মানি, যা পরিচিত পি ফাইভ প্লাস ওয়ান নামে। নিউইয়র্কে অনুষ্ঠিত যুক্তরাষ্ট্র-ইরান বৈঠকে পি ফাইভ প্লাস ওয়ানভুক্ত অন্য দেশগুলোর কূটনীতিকেরাও উপস্থিত ছিলেন। বৈঠক প্রসঙ্গে ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জারিফ বলেন, আলোচনা ‘গঠনমূলক’ ছিল এবং কূটনীতিকেরা ইরানের জনগণের অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলো সমাধানের চেষ্টা করবেন। তিনি বলেন, ‘প্রথম ধাপ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট। এখন আমাদের দেখতে হবে, আন্তরিক কাজের মাধ্যমে আমরা ইতিবাচক কথাগুলোকে মিলিয়ে নিতে পারি কি না।’জারিফ প্রতিশ্রুতি দেন ইরানের পারমাণবিক কর্মসূচি যে ‘শান্তিপূর্ণ ছাড়া অন্য কিছু নয়’ তা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে প্রমাণ করা হবে। ইরানের বিরুদ্ধে আরোপিত অবরোধগুলোকে অগ্রগতির পথে অন্তরায় আখ্যা দিয়ে মন্ত্রী বলেন, তিনি আশা করছেন, দ্বিপক্ষীয়, একপক্ষীয় ও বহুপক্ষীয় সব অবরোধ অদূর ভবিষ্যতে তুলে নেওয়া হবে।ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগও বৈঠক শেষে আশাবাদ ব্যক্ত করেছেন। তিনি বলেছেন, বৈঠকের সুর ও মেজাজ ‘খুবই ভালো’ ছিল। আর ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) পররাষ্ট্রনীতিবিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টন বলেছেন, একটি ‘উচ্চাভিলাষী সময়সীমাকে সামনে রেখে এগিয়ে যাওয়ার’ বিষয়ে বৈঠকে সমঝোতা হয়েছে।এর আগে বুধবারই ইরানের প্রেসিডেন্ট হাসান রুহানি বলেন, পারমাণবিক কর্মসূচি নিয়ে সৃষ্ট বিরোধের ব্যাপারে আগামী ছয় মাসের মধ্যেই তিনি একটি সমঝোতায় পৌঁছাতে চান।মার্কিন কর্তৃপক্ষ বলছে, অবরোধ প্রত্যাহারের বিষয়ে এখনই কোনো বড় ছাড় দেওয়া হবে না। ইরানকে আগে এমন দৃঢ় পদক্ষেপ নিতে হবে, যাতে বিশ্ববাসী আশ্বস্ত হতে পারে যে তারা পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করছে না। বিবিসি, রয়টার্স ও এএফপি।নিরীহ কৃষকের কথিত ভুলের মাশুল হিসেবে এক নারীর নামে ১০ শতক জমি লিখে দেওয়ার জন্য গ্রাম্য মাতবরেরা চাপ সৃষ্টি করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনা ময়মনসিংহের নান্দাইল উপজেলার আচারগাঁও ইউনিয়নের সিংদই গ্রামের।জমি রক্ষায় কৃষক আবুল বাশার (৫৫) নিজের চতুর্থ শ্রেণীতে পড়ুয়া ছেলের (১১) সঙ্গে ওই নারীর (৩০) বিয়ে দিতে রাজি হয়েছেন বলে জানা গেছে।লোকমুখে ওই তথ্য পেয়ে গত শনিবার বেলা আড়াইটায় এই প্রতিবেদক আবুল বাশারের বাড়ি গেলে তাঁর স্ত্রী সফিলা খাতুন (৪০) ঘর থেকে বেরিয়ে আসেন। কিছুক্ষণের মধ্যে বাড়ির উঠানে অনেক লোক জড়ো হয়। এ সময় সফিলা খাতুন জানান, পাশের মইতাপাড়া গ্রামের তাঁর চাচাতো ভাই জামাল উদ্দিনের (৩৮) সঙ্গে এক নারীর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। দু বছর আগে ওই নারীর সঙ্গে স্বামীর ছাড়াছাড়ি হয়। একাধিক স্ত্রী থাকা সত্ত্বেও জামাল এ নারীকে বিয়ে করার সিদ্ধান্ত নেন। গত সপ্তাহে জামাল বিয়ের কথা বলে ওই নারীকে বাবার বাড়ি থেকে বের করে আনেন। পরে তাঁকে ফেলে জামাল আত্মগোপন করেন। ওই নারী তাঁদের (সফিলা) পুকুরপাড়ে কান্নাকাটি করছিলেন। একপর্যায়ে প্রতিবেশী এক নারী তাঁকে ডেকে সফিলার ঘরে নিয়ে আসেন। বাড়িতে ফিরলে বাবা মারধর করবেন—এ কথা বলে ওই নারী এ বাড়িতেই অবস্থান করতে থাকেন।এলাকাবাসী সূত্র জানায়, ওই ঘটনায় গ্রামের কথিত মাতবরেরা গত বৃহস্পতিবার বাশারের উঠানে সালিস বৈঠক বসান। সালিসে উপস্থিত ছিলেন স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য আবদুল হামিদ, আজিম উদ্দিন, রুকন উদ্দিনসহ কয়েকজন।আবুল বাশার জানান, জামালের পালানোর ঘটনার জন্য মাতবরেরা তাঁকে দায়ী করে বলেন, জামালকে খুঁজে এনে দিলে ওই নারীর বিয়ের জন্য তিন লাখ টাকা দিতে হবে। অন্যথায় রোববারের মধ্যে নারীর নামে ১০ শতক ফসলি জমি লিখে দিতে হবে। এ সিদ্ধান্ত মেনে নিতে অস্বীকৃতি জানানোয় তাঁর ওপর প্রচণ্ড চাপ সৃষ্টি করেন সালিসকারীরা। বাশার জানান, জমি রক্ষায় তিনি নাবালক ছেলের সঙ্গে ওই নারীর বিয়ে দিতে রাজি হয়েছেন।আবদুল হামিদ বলেন, ‘সালিসে বাশারের নাবালক ছেলের সঙ্গে ওই মেয়ের বিয়ের সিদ্ধান্ত আমরা দিইনি। বরং ওই মেয়ের বাবার কাছ থেকে জমি পাওয়ার লোভে বাশার নিজেই এ ধরনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’ নান্দাইল থানার ওসি খন্দকার জাহিদুল ইসলাম বলেন, আবদুল হামিদের কাছ থেকে খবর পেয়ে গত রোববার ওই মেয়েকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য থানায় আনা হয়েছে।বগুড়ার শেরপুর উপজেলার ঝাঁজর গ্রামে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে পাশাপাশি দুই ভাইয়ের বাড়িতে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। এ সময় দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্র ও লাঠিসোঁটার আঘাতে ছয়জন আহত হন।একটি ঘটনায় আহত গৃহকর্তা ফারুক হোসেন ও তাঁর মা মরিয়ম বেওয়াকে বগুড়ার শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল এবং প্রতিবেশী আবু তালেব ও আবদুর রহিমকে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়। অন্য ঘটনায় ফারুকের ভাই শাহজামাল আলীর স্ত্রী লতা বেগম ও প্রতিবেশী এশার উদ্দিনের স্ত্রী রুলি খাতুনকে স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়।ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারগুলো জানায়, রাত একটার দিকে ১৫-২০ জন দুর্বৃত্ত প্রথমে চাল ব্যবসায়ী ফারুক হোসেনের বাড়ির লোহার দরজা ভেঙে ভেতরে ঢোকে। এরপর তাঁর শোবার ঘরের দরজা ভেঙে ভেতরে ঢুকে নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। এরপর দুর্বৃত্তরা শাহজামালের বাড়িতেও একই কায়দায় নগদ টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। একপর্যায়ে দুই বাড়ির লোকজন প্রতিরোধের চেষ্টা করলে দুর্বৃত্তরা তাঁদের কুপিয়ে আহত করে।কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সরকারি এক কর্মকর্তার বাড়িতে এবং ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলায় দুটি বসতবাড়িতে গত শুক্রবার রাতে ডাকাতি হয়েছে। এদিকে গত বৃহস্পতিবার রাতে মৌলভীবাজারের রাজনগর উপজেলায় আওয়ামী লীগের এক নেতার বাড়িতে ডাকাতি হয়েছে। এখানে ডাকাতের গুলিতে এক ব্যক্তি গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।প্রথম আলোর প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:চৌদ্দগ্রাম (কুমিল্লা): গত শুক্রবার গভীর রাতে উপজেলার কনকাপৈত ইউনিয়নের বসকরা গ্রামে যৌথ বাহিনী পরিচয় দিয়ে ডাকাতেরা সরকারি কর্মকর্তা আবদুর রশিদ মজুমদারের বাড়িতে প্রবেশ করে। পরে ডাকাতেরা পরিবারের সবাইকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে ৭০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকারসহ মূল্যবান মালামাল নিয়ে যায়। খবর পেয়ে গতকাল দুপুরে চৌদ্দগ্রাম থানার পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে।ব্রাহ্মণপাড়া (কুমিল্লা): রাত সাড়ে ১২টার দিকে উপজেলার মিরপুর গ্রামের হাইওয়ে পুলিশ ফাঁড়িসংলগ্ন কাশেম মিয়ার বাড়িতে ১৫-২০ জন ডাকাত হানা দেয়। ডাকাতেরা গাছের গুঁড়ি দিয়ে দরজা ভেঙে ঘরের ভেতরে ঢুকে পরিবারের সদস্যদের অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে। পরে তারা ৩৬ হাজার টাকা, এক ভরি স্বর্ণালংকার এবং দুটি মুঠোফোন লুট করে নিয়ে যায়। ডাকাতেরা পাশের আলমগীর হোসেনের বাড়িতে হানা দিয়ে দেড় লাখ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।মৌলভীবাজার: বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে রাজনগর উপজেলার মনসুরনগর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মো. সাদিকুর রহমানের বাড়ির বারান্দার গ্রিল কেটে ১৫-১৬ জন ডাকাত ভেতরে প্রবেশ করে। আশপাশের বাড়ির লোকজন ডাকাতির ঘটনা বুঝতে পেরে চিত্কার শুরু করে। একপর্যায়ে ডাকাতেরা ওই বাড়ি থেকে দেড় লাখ টাকা, ১৫ ভরি স্বর্ণালংকার ও তিনটি মুঠোফোন নিয়ে দ্রুত পালিয়ে যায়। পালানোর সময় ধাওয়া করলে ডাকাতেরা স্থানীয় লোকজনকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়ে। গুলিতে সাদিকুর রহমানের চাচাতো ভাই সামছুল মিয়া গুরুতর আহত হন।কমলগঞ্জ (মৌলভীবাজার): গ্রামবাসীর সহায়তায় পুলিশ গত শুক্রবার সন্ধ্যায় উপজেলার আদমপুর ইউনিয়নের বনগাঁও গ্রাম থেকে চিহ্নিত ডাকাত ইয়াছিন মিয়াকে (৩০) গ্রেপ্তার করেছে। কমলগঞ্জ থানার পরিদর্শক (তদন্ত) বদরুল ইসলাম জানান, ইয়াছিন মিয়ার বিরুদ্ধে ডাকাতি, চুরিসহ থানায় কয়েকটি মামলা রয়েছে। তিনি ওই সব মামলার পলাতক আসামি।
ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জ উপজেলায় ‘কদমতলী মৎস্য অভয়াশ্রম’ খননকাজে অনিয়ম এবং অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ তদন্তের তারিখ নয় মাস আগে নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু এখন পর্যন্ত তদন্ত না হওয়ায় এ ঘটনায় জড়িত লোকজন অভিযোগকারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ কারণে অভিযোগকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন।উপজেলা মৎস্য কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১১-১২ অর্থবছরে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের অধীন ‘বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও সেচ প্রকল্প এলাকায় এবং অন্যান্য জলাশয়ে সমন্বিত মৎস্য প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন (চতুর্থ পর্যায়) শীর্ষক’ প্রকল্পের মাধ্যমে কদমতলী মৎস্য অভয়াশ্রম খননকাজের জন্য সাত লাখ টাকা বরাদ্দ করা হয়। প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য জেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে সভাপতি ও উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তাকে সদস্যসচিব করে আট সদস্যের কমিটি গঠন করে দেওয়া হয়।মাঠপর্যায়ে প্রকল্প বাস্তবায়নের জন্য ঠাকুরগাঁও-৩ আসনের সাংসদ হাফিজ উদ্দীন আহম্মেদ দৌলতপুর ইউনিয়ন জাতীয় পার্টির সভাপতি মো. আবু রায়হানকে সভাপতি করে ছয় সদস্যের অপর একটি কমিটি গঠন করে দেন। কমিটির অপর পাঁচ সদস্য হলেন হামিদুল ইসলাম, আতাউর রহমান, ফারাজান আলী, দেলু রানী ও আবদুস সালাম। কমিটির সদস্যরা নামমাত্র কাজ করিয়ে বরাদ্দের অর্থ আত্মসাৎ করেছেন বলে অভয়াশ্রমের মৎস্যজীবীসহ ৫১ জন গ্রামবাসী মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালকের কাছে গত বছরের অক্টোবর মাসে লিখিত অভিযোগ দেন।এ বিষয়ে গত বছরের ৬ নভেম্বর প্রথম আলোতে ‘মৎস্য অভয়াশ্রম খননের অর্থ আত্মসাতের অভিযোগ’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। পরে মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রধান আবদুর রশিদ ঢালী সরেজমিনে তদন্তের উদ্যোগ দেন। তিনি গত বছরের ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর অভয়াশ্রমে গিয়ে তদন্ত করার তারিখ উল্লেখ করে অভিযোগকারীদের একটি চিঠি পাঠান। কিন্তু আজও তদন্ত হয়নি।অভয়াশ্রমের মৎস্যজীবীরা জানান, তদন্ত না হওয়ায় ওই ঘটনার সঙ্গে জড়িত ফারাজান আলী অভিযোগকারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করছেন। এ কারণে মৎস্যজীবীরা অভয়াশ্রমে মাছ ধরতে পারছেন না। ফারাজান আলী অভিযোগকারীদের সঙ্গে খারাপ আচরণ করার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।মৎস্য অধিদপ্তরের সহকারী প্রধান আবদুর রশীদ মুঠোফোনে জানান, সে সময় হরতালসহ বিভিন্ন কারণে যাওয়া সম্ভব হয়নি। তবে আবারও তারিখ নির্ধারণ করে ওই ঘটনার তদন্ত করা হবে।উপজেলার বনুয়াপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেন বলেন, ‘গত বছরের ৩০ ও ৩১ ডিসেম্বর তদন্ত করা হবে মর্মে মৎস্য অধিদপ্তর থেকে আমাদের চিঠি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু নয় মাস পরেও তদন্ত হলো না। তদন্তকারী কর্মকর্তা কেন পিছিয়ে গেলেন তা আমাদের খুঁজে বের করতে হবে।’লবস্টার থার্মিডরনাম শুনেই বুঝতে পেরেছেন চিংড়ি নিয়ে বেশ এলাহি একটা কাণ্ড-কারখানা হবে। চিংড়ির ওজন দুই-তিন কেজি পর্যন্ত হতে পারে। তবে এখানে ৫০০ গ্রাম চিংড়ির হিসেবে রেসিপি দেওয়া হলো।উপকরণ: লবস্টার ৫০০ গ্রাম, ক্যানড ক্রিম ১টি, ক্যানড মাশরুম ২ টুকরা, এ ছাড়া পরিমাণমতো লাগবে মাখন, পেঁয়াজ, রসুন, লবণ, সাদা গোলমরিচ ও পারমিজান পনির।প্রণালি: লবস্টারের খোসা থেকে মাংস বের করে টুকরা করে নিন। পেঁয়াজ, রসুন মিহি কুচি করে নিন। চুলায় মাখন গলিয়ে তাতে পেঁয়াজ-রসুন ভেজে বাদামি করে নিন। মাশরুমকুচি দিন। এটি মিনিটি দুয়েক ভেজে চিংড়ির মাংস দিয়ে নিন। এবার ৮-১০ মিনিট ভাজতে হবে। এরপর পুরো একটা ক্যানড ক্রিম ও পারমিজান পনির দিন। ভালো করে নেড়ে মাখা মাখা করতে হবে। এরপর লবস্টার খোসাটা ওভেনে পাঁচ মিনিট হালকা গরম করে নিতে হবে। এরপর রান্না করা চিংড়ি খোসার ভেতর ভরে দিন। এর ওপর পনির দিয়ে মিনিট তিনেক ওভেনে গরম করে পরিবেশন করবেন লবস্টার থার্মিডর।গ্রিলড কালামারি সালাদউপকরণ: কালামারি/স্কুইড ১২০ গ্রাম, পেঁয়াজ ১টা, লাল ও সবুজ ক্যাপসিকাম একটির চার ভাগের এক ভাগ করে, কাঁকড়ার পা ১টা, চেরি টমেটো ২টি, গ্রিন অলিভ ২টি। এ ছাড়া পরিমাণমতো লাগবে লবণ, গোলমরিচগুঁড়া ও জলপাই তেল।প্রণালি: পেঁয়াজ ও ক্যাপসিকাম জুলিয়ান করে কেটে নিন। কাঁকড়ার পা টুকরা করে নিন। প্যানে জলপাই তেল নিয়ে তাতে স্কুইড বা কালামারি দিয়ে মিনিট পাঁচেক ভেজে নিন। এবার কাঁকড়ার পা, পেঁয়াজ, টমেটো, গ্রিন অলিভ দিয়ে দুই মিনিট ভাজুন। নামিয়ে প্লেটে সাজিয়ে পরিবেশন।দেশের শীর্ষস্থানীয় ওষুধ কোম্পানির কারখানাগুলো ঘুরে দেখলেন তাঁরা। দেখলেন কীভাবে ওষুধ তৈরি হয় কাঁচামাল থেকে, নিয়ন্ত্রণ করা হয় ওষুধের মান। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (ইউএসটিসি) ফার্মেসি বিভাগের শিক্ষার্থীরা এভাবে হাতে-কলমে অভিজ্ঞতা নিতে গিয়েছিলেন সাভার, নারায়ণগঞ্জ ও টঙ্গীর বিভিন্ন ওষুধ কারখানায়। ১৩ থেকে ১৮ নভেম্বর ছয় দিনের শিক্ষা সফরে অংশ নিয়েছিলেন ফার্মেসি বিভাগের ১৯তম ব্যাচের ৪৮ জন শিক্ষার্থী ও চারজন শিক্ষক।ছয় দিনের এ শিল্প-শিক্ষা ভ্রমণে ইউএসটিসির শিক্ষার্থীরা গিয়েছিলেন সাভারের ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস, নারায়ণগঞ্জের অ্যাডভান্স কেমিকেল ইন্ডাস্ট্রিজ (এসিআই) ও টঙ্গীর বেক্সিমকো ফার্মাসিউটিক্যালসের কারখানায়।উপাদান থেকে ক িকরে নানা প্রক্রিয়া শেষে ওষুধ উৎপাদিত হয়, এ ভ্রমণে সেটি প্রত্যক্ষ করেন শিক্ষার্থীরা।ভ্রমণে অংশ নেওয়া শিক্ষার্থী রবিউল হোসেন চৌধুরী বলেন, ওষুধ উৎপাদনের কারখানায় ভ্রমণের পর বইয়ে পড়া জ্ঞানের যথাযথ প্রয়োগ ও সমন্বয় করা সহজ হবে।রাজধানীর কদমতলী থানা এলাকায় আমিরুল ইসলাম (২৮) নামের এক যুবক খুন হয়েছেন। গতকাল শনিবার দুপুরে পুলিশ ওয়াসা বটতলা নামক এলাকা থেকে তাঁর লাশ উদ্ধার করেছে।পুলিশ জানায়, আমিরুলের মাথায় গুরুতর জখম ছিল। ধারণা করা হচ্ছে, মাথায় আঘাত করে অজ্ঞাতনামা দুর্বৃত্তরা তাঁকে হত্যা করেছে।
ব্যঙ্গাত্মক হাসিতে কথাটি বলছিলেন আশিকুর রহমান। মহাসচিবের সঙ্গে কণ্ঠ মিলিয়ে জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদের নেতারা সমস্বরেই বলে উঠলেন, ‘নির্বাচনের আগে এমন অনেক কিছু হতে পারে বলে ধারণা ছিল। কিন্তু এতটা ন্যক্কারজনক পর্যায়ে যাবে ভাবতেও পারিনি।’বিসিবি নির্বাচনে জেলা ও বিভাগীয় পর্যায়ের কাউন্সিলর মনোনয়ন প্রক্রিয়ায় নানা অনিয়মের খবর গত কিছুদিন ধরেই আসছে সংবাদমাধ্যমে। কাল সংবাদ সম্মেলন করে অনিয়মের ১৩টি সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তুলে ধরল জেলা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংগঠক পরিষদ। বাংলাদেশের ক্রীড়াঙ্গনে যাদের পরিচিতি মূলত ‘ফোরাম’ নামে। নির্বাচন প্রক্রিয়ার এত তাড়াহুড়া করা নিয়েও আপত্তি আছে ফোরাম নেতাদের, আছে অনেক প্রশ্ন ও শঙ্কা। এই সংবাদ সম্মেলনটা হলো এমন এক দিনে, যেদিন সকালেই দেওয়া হয়েছে বিসিবি নির্বাচনের জন্য ১৭২ জনের প্রাথমিক ভোটার তালিকা।আদালতের রায়, কাউন্সিলর মনোনয়ন, তফসিল ঘোষণা—গত কিছুদিন ধরেই ঢাক গুড়গুড় বাজছিল বিসিবি নির্বাচনের। কাল ভোটার তালিকা প্রকাশের দিনে ফোরামের এই সংবাদ সম্মেলনে যেন আনুষ্ঠানিকভাবেই বেজে গেল ভোটযুদ্ধের দামামা। যদিও ফোরামের নেতাদের অভিযোগ, সরকারি প্রশাসন আর বিসিবির বর্তমান অস্থায়ী কমিটির হস্তক্ষেপ ও প্রভাবে যুদ্ধটা ঠিক যুদ্ধ হয়ে উঠছে না, আয়োজন চলছে অনেকটা একতরফা লড়াইয়ের। প্রশাসনের প্রভাব নিয়ে সরকারকে একটা সতর্কবার্তাও শোনালেন খুলনা বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক এস এম মোর্ত্তজা রশিদী, ‘বিসিবি নির্বাচনেই যদি প্রশাসনকে দিয়ে এভাবে প্রভাব খাটানো হয়, তাহলে আসছে জাতীয় নির্বাচন নিয়ে ওঠা প্রশ্নগুলোও আরও জোরদার হবে।’ফোরামের মহাসচিব আশিকুর রহমান জানালেন, নিজেদের অভিযোগনামা নিয়ে আইনমাফিক আপত্তি জানাবেন তাঁরা। তাতে ফল না হলে আগামীকাল সন্ধ্যায় ফোরামের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে ঠিক হবে পরবর্তী করণীয়। সেই সভা থেকে আসতে পারে নির্বাচন বয়কট কিংবা মামলা করার সিদ্ধান্তও।ফোরামের উল্লেখ করা ১৩টি ‘অনিয়মের’ ঘটনার শুরুতেই আছেন মহাসচিব। নড়াইল জেলা ক্রীড়া সংস্থার কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় কাউন্সিলর হিসেবে ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক আশিকুর রহমানের নাম সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। কিন্তু বিসিবির কাউন্সিলরশিপ ফরমই নাকি তাঁরা পাননি। পরে জানতে পেরেছেন, ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক ‘জনৈক আশরাফুজ্জামান পিন্টুকে’ মনোনয়ন দিয়েছেন। আশিকুর রহমানের আক্ষেপ, ‘৪৫ বছর ধরে ক্রীড়াঙ্গনে আছি আমি। এই অঙ্গনকে সমৃদ্ধ করার চেষ্টা করেছি সারা জীবন। কিন্তু এতটা কষ্টের অভিজ্ঞতা হবে, ভাবতেও পারিনি।’ফোরামের অভিযোগ, এ ছাড়া অনিয়ম করা হয়েছে জামালপুর, নড়াইল, মুন্সিগঞ্জ, মানিকগঞ্জ, খুলনা, সিলেট, সুনামগঞ্জ ও মেহেরপুর জেলার কাউন্সিলর মনোনয়নে। আর বিভাগীয় কাউন্সিল মনোনয়নে অনিয়ম হয়েছে চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, বরিশাল ও সিলেটে। এতেই প্রশ্ন উঠে গেছে সাবেক দুই বাংলাদেশ অধিনায়ক আকরাম খান ও নাঈমুর রহমানের মনোনয়ন নিয়ে। ফোরামের দাবি, চট্টগ্রাম বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কার্যনির্বাহী কমিটির সভায় সর্বসম্মতিক্রমে চূড়ান্ত হয়েছিল সিরাজউদ্দিন মোহাম্মদ আলমগীরের নাম। অথচ ‘বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ পরিষদের সদস্য কিংবা কার্যনির্বাহী সদস্য না হওয়ার পরও’ বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সভাপতি মনোনয়ন দিয়েছেন আকরামকে। নাঈমুরের ক্ষেত্রেও একই অভিযোগ মানিকগঞ্জ জেলা ক্রীড়া সংস্থার সভাপতির বিপক্ষে।বারবার ঘুরেফিরে এল খুলনার শেখ সোহেলের নামও। ফোরামের দাবি ওই একই, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ পরিষদের সদস্য কিংবা কার্যনির্বাহী সদস্য না হওয়ার পরও শেখ সোহেলকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে। অথচ ক্রীড়া সংস্থার প্যাডে বিসিবিতে চিঠি পাঠানো হয়েছিল এস এম মোর্ত্তজা রশিদী দারার নাম দিয়ে। বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আবদুল জলিলের স্বাক্ষরিত সেই চিঠির কপিও কাল সঙ্গে করে এনে সাংবাদিকদের দেখিয়েছেন মোর্ত্তজা রশিদী।নির্বাচন প্রক্রিয়া যেভাবে তাড়াহুড়া করে সম্পন্ন করা হচ্ছে, তা নিয়েও শঙ্কার শেষ নেই ফোরামের নেতাদের। লিখিত বিবৃতিতে দাবি করা হয়েছে, ‘গঠনতন্ত্রে কমপক্ষে ৪৫ দিন পূর্বে বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে কাউন্সিলর চেয়ে চিঠি দেওয়ার কথা থাকলেও বিসিবি মাত্র ৮ দিনের সময় দিয়ে চিঠি দিয়েছে।’ ভোটার তালিকা নিয়ে আপত্তি ও শুনানি একই দিনে (২৯ সেপ্টেম্বর ) ধার্য করাতে ফোরামের আপত্তির কারণটি যথেষ্ট যৌক্তিক, ‘একই দিনে আপত্তি ও শুনানি নজিরবিহীন। কেউ যদি রংপুর জেলার কাউন্সিলরের ব্যাপারে আপত্তি দেন, তাহলে আপত্তির ব্যাপারটি রংপুরের ওই ব্যক্তিকে জানাতে হবে। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ওই ব্যক্তি কীভাবে রংপুর থেকে ঢাকা আসবেন?’সিলেটের এমসি কলেজের ছড়ায় ফেলে হত্যার ঘটনার পেছনে ছিল মাদকের টাকার ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়ে বিরোধ। ১৫ বোতল ফেনসিডিলের জন্য খুনের ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার সঙ্গে জড়িত সন্দেহে গ্রেপ্তার হওয়া যুবক জুয়েল আহমদ আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দিতে এ তথ্য প্রকাশ করেন।সিলেটের মুখ্য বিচারিক হাকিম আদালতে গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় জুয়েল জবানবন্দি দেন। তাঁর জবানবন্দি ১৬৪ ধারায় রেকর্ড করেন মুখ্য বিচারিক হাকিম (আদালত-৩) আনোয়ারুল হক চৌধুরী।পুলিশ জানায়, এমসি কলেজ ক্যাম্পাসের ছড়া থেকে ১৯ অক্টোবর এলাকাবাসীর মাধ্যমে খবর পেয়ে অজ্ঞাত হিসেবে এক যুবকের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরদিন ওই লাশ জকিগঞ্জের লোহামহল গ্রামের শেখপাড়ার রায়হান উদ্দিনের (৩০) বলে শনাক্ত হয়। তিনি সিলেট নগরে ব্যবসা করতেন বলে পরিবারের পক্ষ থেকে পুলিশকে জানানো হয়। কিন্তু কী ব্যবসা করতেন—এ বিষয়টি পুলিশকে জানাতে পারেনি পরিবার। রায়হানের ব্যবসার ধরন খুঁজতে পুলিশ তদন্ত শুরু করে। গতকাল সকালে রায়হানের ব্যবসায়িক বন্ধু হিসেবে পরিচিত জুয়েল আহমদকে (২৮) সন্দেহজনকভাবে আটক করে পুলিশ। জুয়েল ঘটনায় জড়িত থাকার বিষয়টি পুলিশকে জানালে গতকাল সন্ধ্যায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি নেওয়া হয়। জবানবন্দিতে জুয়েল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করে জানান, মাদক ব্যবসার টাকা নিয়ে দ্বন্দ্বের জের ধরে জুয়েল পাঁচজন সহযোগীকে নিয়ে রায়হানকে খুন করেন।জুয়েলকে রাতেই জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।প্রতিবছর আমন ধান কাটার সময় মজুরদের ব্যাপক চাহিদা থাকলেও এবার সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার চিত্র ভিন্ন। ধান কাটার ভরা মৌসুমেও মজুরদের নেই তেমন কদর। এ কারণে দিনহাজিরার দামও এবার অনেক কম। গতকাল সকালে উপজেলার ধানগড়া বাজারে গিয়ে দেখা যায়, বিভিন্ন বয়সী প্রায় ৫০০ দিনমজুর অপেক্ষা করে বসে আছেন কিন্তু সেই তুলনায় কামলা নিতে আসা গৃহস্থের সংখ্যা কম।  রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ) প্রতিনিধিময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি অনুষদের দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র নাসিম আকরাম সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন। গত শুক্রবার ঢাকার মেট্রোপলিটন হাসপাতালে তাঁর মৃত্যু হয়।বৃহস্পতিবার দুপুরে নাসিম কিশোরগঞ্জ জেলার হোসেনপুর কলেজ মোড় এলাকায় মোটরসাইকেলের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে গাছের সঙ্গে ধাক্কা খান। গুরুতর আহত অবস্থায় তাঁকে উদ্ধার করে কিশোরগঞ্জের একটি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেখানে তাঁর অবস্থার অবনতি হলে পরিবারের লোকজন তাঁকে ঢাকার মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নেন। সেখানে শুক্রবার রাত আটটার দিকে নাসিম মারা যান।
রংপুরে গত সাড়ে পাঁচ বছরে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি এবং বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (পিডিবি) ৪২০টি ট্রান্সফরমার ও বিপুল পরিমাণ তার চুরি হয়েছে। এগুলোর আনুমানিক মূল্য তিন কোটি টাকা বলে সংশ্লিষ্ট দপ্তর সূত্রে জানা গেছে।পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি ও পিডিবি সূত্র জানায়, ২০০৮ সালের জানুয়ারি থেকে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর ২২১টি ট্রান্সফরমার ও পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর ১৯১টি ট্রান্সফরমার এবং পিডিবির আটটি ট্রান্সফরমার চুরি যায়। এ ছাড়া এসব এলাকায় বিপুল পরিমাণ বৈদ্যুতিক তারও চুরি হয়েছে। চুরি হওয়া প্রতিটি ট্রান্সফরমারের দাম ৫০ হাজার থেকে এক লাখ টাকা। সেই হিসাবে চুরি যাওয়া সব কটি ট্রান্সফরমারের দাম প্রায় তিন কোটি টাকা হবে বলে পল্লী বিদ্যুৎ ও পিডিবি সূত্রে জানা গেছে।এদিকে ২১ সেপ্টেম্বর রংপুর শহরের কেরানীপাড়া ও বিসিক শিল্পনগর এলাকা থেকে পিডিবির দুটি ট্রান্সফরমার চুরি করে ট্রাকে নিয়ে যাওয়ার সময় পুলিশ ট্রাকটি ধাওয়া করে। পরে বদরগঞ্জ এলাকার শহীদ মিনারের কাছে গেলে পুলিশ গুলি চালায়। পরে পালিয়ে যাওয়া সাতজনকে গ্রেপ্তার করা হয়।গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিদের উদ্ধৃতি দিয়ে রংপুরের সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) হুমায়ুন কবির জানান, গ্রেপ্তার হওয়া ব্যক্তিরা আন্তজেলা ডাকাত দলের সদস্য। রংপুরের আট উপজেলা ও গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জসহ নয়টি উপজেলা নিয়ে দুটি পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১ ও ২-এর কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে। এর মধ্যে পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর আওতাধীন উপজেলা হলো মিঠাপুকুর, কাউনিয়া, পীরগাছা ও সুন্দরগঞ্জ এবং সমিতি-২-এর আওতাধীন উপজেলা হলো রংপুর সদর,গঙ্গাচড়া, তারাগঞ্জ ও বদরগঞ্জ। গঙ্গাচড়া উপজেলার কোলকোন্দ ইউনিয়নের গ্রাহক আফজাল হোসেন বলেন, ট্রান্সফরমার চুরি হওয়ার খেসারত গ্রাহকদের দিতে হয়। মিঠাপুকুর উপজেলার রানীপুকুর এলাকার আশরাফ মিয়া বলেন, এই এলাকায় গত তিন বছরে দুবার ট্রান্সফরমার চুরির জন্য বাড়তি টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে।গঙ্গাচড়া উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান মজিবর রহমান প্রামাণিক বলেন, ট্রান্সফরমার ও তার চুরি হলে পল্লী বিদ্যুতের কোনো মাথাব্যথা থাকে না। মিঠাপুকুর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন অভিযোগ করে বলেন, সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলোর কয়েকজন অসাধু কর্মচারীর যোগসাজশে এসব চুরির ঘটনা ঘটছে।রংপুর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-১-এর মহাব্যবস্থাপক (জিএম) তোফাজ্জল হোসেন বলেন, চুরির পর সংশ্লিষ্ট থানায় মামলা করা হয়। গ্রেপ্তার করা না-করা থানার পুলিশের বিষয়।পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২-এর জিএম নরেন্দ্র নাথ সরকার বলেন, পুলিশের সহায়তায় এলাকার জনগণ সংঘবদ্ধ হয়ে চুরি রোধ করতে পারেন। এই চুরির সঙ্গে পল্লী বিদ্যুতের লোকজন জড়িত থাকার অভিযোগ তিনিও অস্বীকার করেন।পিডিবি রংপুর অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলী মজিবর রহমান বলেন, শহর এলাকায় ট্রান্সফরমার চুরির হার কম থাকলেও গ্রামাঞ্চলে বেশি শোনা যায়।পরিবার তাঁদের প্রেমের সম্পর্ক মেনে নেবে না বুঝতে পেরে আত্মহত্যা করেছে দুই তরুণ-তরুণী। সম্পর্কে তাঁরা খালাতো ভাইবোন। মৌলভীবাজারের কুলাউড়া উপজেলার কুলাউড়া ইউনিয়নের গাজীপুর চা-বাগানের একটি সেগুনগাছ থেকে গতকাল সোমবার তাঁদের ঝুলন্ত লাশ উদ্ধার করা হয়।মৃত দুজনের নাম চুটল রবিদাস (১৯) ও লক্ষ্মী রবিদাস (১৬)। পুলিশ ও স্থানীয় লোকজন জানান, দুই বছর ধরে মৌলভীবাজারের কমলগঞ্জ উপজেলার শমশেরনগর চা-বাগানের দর্শন রবিদাসের ছেলে চুটল রবিদাস কুলাউড়া উপজেলার গাজীপুর চা-বাগানে তাঁর খালার বাসায় থাকতেন।একপর্যায়ে খালাতো বোন গাজীপুর শাহ সুন্দর উচ্চবিদ্যালয়ের অষ্টম শ্রেণীর ছাত্রী লক্ষ্মীর সঙ্গে তাঁর প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। কিন্তু পরিবার তাঁদের সম্পর্ক মেনে নেবে না বুঝতে পেরে তাঁরা আত্মহত্যা করেন। গতকাল ভোরে লোকজন গাজীপুর চা-বাগানের একটি সেগুনগাছে তাঁদের লাশ ঝুলতে দেখেন। পরে কুলাউড়া থানা থেকে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে লাশ উদ্ধার করে। এ সময় লক্ষ্মীর কাছ থেকে একটি চিরকুট উদ্ধার করা হয়।এটিতে অভিভাবকদের উদ্দেশে লেখা রয়েছে, ‘আমরা দুজন দুজনকে ভালোবাসি। তোমরা মেনে নিবে না। তাই আত্মহত্যা করছি...।’ এই ঘটনায় কুলাউড়া থানায় একটি অপমৃত্যুর মামলা হয়েছে। কুলাউড়া থানার ওসি মো. হাসানুজ্জামান ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেছেন।যশোরের কেশবপুরের বিল খুকশিয়ার আট কপাটবিশিষ্ট জলকপাট দিয়ে সঠিকভাবে পানি নিষ্কাশিত না হওয়ায় ২৭টি বিলের বোরো আবাদ অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে। কৃষকেরা অভিযোগ করেন, পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো) গেট খালাসি নিয়োগ না করায় পানি নিষ্কাশন বাধাগ্রস্ত হচ্ছে।এলাকাবাসী সূত্র জানায়, মনিরামপুর ও কেশবপুর উপজেলার ২৭টি বিলের বর্ষা মৌসুমের জলাবদ্ধ পানি বিল খুকশিয়ার আট ফোকরবিশিষ্ট জলকপাট দিয়ে নিষ্কাশিত হয়। বিলগুলোর মধ্যে অন্যতম হলো বিল খুকশিয়া, কালীচরণপুর বিল, বাগডাঙ্গা, নারায়ণপুর, মনোহরনগর, পাথরঘাটা, আশননগর, বাটবিলা ও জিরেরডাঙ্গার বিল। এ বছর অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের ফলে বিলগুলো এখনো জলাবদ্ধ হয়ে রয়েছে।নারায়ণপুর গ্রামের কৃষক শঙ্কর কুমার কর্মকার বলেন, ভাটার সময় কিছু পানি নামলেও জোয়ারের সময় একবারেই সরে না। আগামী মৌসুমে বোরা আবাদ করা যাবে বলে মনে হয় না। বেতিখোলা গ্রামের কৃষক নজরুল শেখ বলেন, ‘বেতিখোলা বিলে এখন তিন-চার হাত পানি রয়েছে। এই পানি কবে নামবে আর আমরা কবে ফসল করতে পারব তা বুঝতে পারছি না।’ একই ধরনের কথা বলেন আড়ুয়া গ্রামের সিরাজুল ইসলামসহ কয়েকজন কৃষক।গত সোমবার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিল খুকশিয়ার শ্রীহরি নদীর সঙ্গে নির্মিত আট ফোকরবিশিষ্ট জলকপাটে মাত্র দুটি ফোকর দিয়ে পানি নিষ্কাশিত হচ্ছে। গেটের পাশেই নৌকায় বসে আছেন ভোলা বিশ্বাস। তিনি জানান, তাঁর বাড়ি চুকনগর গ্রামে। আড়ুয়া গ্রামের মিন্টু গাজী তাঁকে কপাট খোলা ও বন্ধ করার দায়িত্ব দিয়েছেন। বর্তমানে তিনটি কপাট ভালো আছে। অন্য পাঁচটি নষ্ট।এ ব্যাপারে মিন্টু গাজী বলেন, ‘এবার বর্ষায় অতিরিক্ত বৃষ্টিপাতের কারণে ব্যাপক এলাকায় পানি জমে যায়। ওই সময় গ্রামবাসীকে নিয়ে সবগুলো গেট খুলে দেওয়া হয়। পানি দ্রুত নামার কারণে সাত-আটটি ঘেরের মাছ বাঁধ ধসে বেরিয়ে যায়। ঘের মালিকদের যাতে ক্ষতি না হয় এ জন্য এখন দুটি গেট খোলা রাখা হয়েছে। এ কাজটি আমি স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে করে থাকি। এর জন্য আমি কোনো টাকা পাই না।’সুলতান নামে একজন ঘেরমালিক জানান, একসঙ্গে আটটি কপাট খুলে দিলে খুকশিয়া বিলের ঘেরগুলোর বাঁধ ধসে মাছ খালে চলে যাবে। তাই অল্প করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তা সুশান্ত কুমার সুর বলেন, এখনো বোরো মৌসুমের এক মাস দেরি আছে, এর মধ্যে পানি নিষ্কাশন হলে ফসল করা সম্ভব।কেশবপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আবু সায়েদ মনজুর আলম বলেন, ‘কপাট সঠিকভাবে খোলা না হওয়ার অভিযোগ আমি পেয়েছি। আমি পাউবোর নির্বাহী প্রকৌশলীকে জানিয়েছি। তার পরও এলাকার চেয়ারম্যান ও গণ্যমান্য ব্যক্তিদের সঙ্গে বসে আমরা লোক নিয়োগ করে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নেব।’পাউবোর কেশবপুর কার্যালয়ের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম শেখ বলেন, খারাপ কপাটগুলো মেরামতের জন্য ঢাকার ওয়াপদা ভবনে প্রস্তাব পাঠানো হয়েছে। ২০০১ সালে খালাসি অবসর নেওয়ার পর আর নতুন করে কাউকে নিয়োগ দেওয়া হয়নি। তবে খালাসি নিয়োগ দেওয়ার একটি প্রস্তাবও দেওয়া আছে।হরতাল-অবরোধের নামে নাশকতা ও হত্যাযজ্ঞ বন্ধ, জামায়াত-শিবিরের তাণ্ডব প্রতিরোধ, পাকিস্তানি পার্লামেন্টে নিন্দা প্রস্তাব গ্রহণের প্রতিবাদ এবং জনগণের জীবন ও সম্পদ রক্ষার দাবিতে ময়মনসিংহে মুক্তিযোদ্ধা-জনতার সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। গতকাল শনিবার দুপুরে শহরের রেলওয়ে স্টেশনে কৃষ্ণচূড়া চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের চেতনা বাস্তবায়ন মঞ্চের উদ্যোগে এই সমাবেশ হয়।প্রমুখ।ময়মনসিংহ অফিস
দিনাজপুরের ফুলবাড়ী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের এক্স-রে যন্ত্রটি এক বছরেরও বেশি সময় ধরে বিকল হয়ে পড়ে আছে। এতে নিম্ন আয়ের রোগীরা চরম দুর্ভোগে পড়েছেন।গত শনিবার দুপুরে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স চত্বরে কাঁটাবাড়ী গ্রামের আফজাল হোসেন (৪০) বলেন, ‘হাসপাতালোত পেটের বেদনার ওষুধ নিবা গেইছিনু, শহর থেকে মোক (আমাকে) পেটের এক্স-রে করাবার কথা কইছে। মুই এক্স-রে করো নাই, তাই ওষুধও দেয় নাই।’স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের রেডিওলজিস্ট অরুণ কুমার সরকার জানান, ২০১২ সালের আগস্ট মাসে এক্স-রে যন্ত্রটির রেডিয়েশন টিউব (রেজ্যুলেশন) নষ্ট হয়। যন্ত্রটি মেরামতের জন্য এ পর্যন্ত চারবার স্বাস্থ্য বিভাগের কেন্দ্রীয় মেডিকেল স্টোর ডিপার্টমেন্টে (সিএমএসডি) লিখিতভাবে অনুরোধ জানানো হয়। দুই দফায় একজন প্রকৌশলী এসে এক্স-রে যন্ত্রটি মেরামতের চেষ্টা চালায়। অবশেষে যন্ত্রাংশ পরিবর্তনের পরামর্শ দিয়ে তিনি চলে গেছেন।অরুণ কুমার বলেন, ওই যন্ত্রাংশের আনুমানিক মূল্য ৭৬ হাজার টাকা। সরকারিভাবে বরাদ্দ না পাওয়া পর্যন্ত এক্স-রে যন্ত্রটি সচল করা সম্ভব নয়।হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত আবাসিক চিকিৎসা কর্মকর্তা (আরএমও) বিপ্লব বিশ্বাস বলেন, বহির্বিভাগে প্রতিদিন গড়ে দুই শতাধিক রোগী চিকিৎসা নিতে আসে। তাদের মধ্যে কমপক্ষে ২০ জন রোগীর এক্স-রে করার প্রয়োজন হয়। কিন্তু অধিকাংশ রোগী দরিদ্র, তারা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে টাকা দিয়ে এক্স-রে করাতে পারে না। ফলে ধারণার ওপর নির্ভর করে চিকিৎসা দিতে হয়।উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) আমির আলী বলেন, এখানে রোগীর চাপ বেশি। রোগীদের স্বাস্থসেবা নিশ্চিতের জন্য এক্স-রে মেশিন খুবই জরুরি। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ করা হচ্ছে, কিন্তু এক্স-রে মেশিনটি মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না।স্বামীর কথামতো মাদক পাচার ও বিক্রি করতে রাজি না হওয়ায় স্ত্রীকে মারধর করে বাপের বাড়ি পাঠিয়ে দেওয়ার ঘটনায় আখাউড়া থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা হয়েছে।কিশোরগঞ্জ সদর উপজেলার মাইজকাপন ইউনিয়নের হাজীরগল গ্রামের আহম্মদ আলীর মেয়ে তৈরি পোশাক কারখানার কর্মী লিজা বেগম (২৮) বাদী হয়ে গত শনিবার স্বামী লিটন মিয়া, শাশুড়ি নূরজাহান ও দেবর তছির মিয়াকে আসামি করে ওই মামলা দায়ের করেন।মামলার এজাহারে বলা হয়েছে, ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার আখাউড়ার রাধানগর গ্রামের আবদুল আজিজের সঙ্গে ২০ মে লিজার বিয়ে হয়। বিয়ের এক মাস পরই স্বামী লিটন তাঁকে ইয়াবাভর্তি একটি প্যাকেট দিয়ে শাশুড়ি মালেকা বানুর সঙ্গে ঢাকায় যেতে বলেন।লিজা মাদকের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে ঢাকায় যেতে অপারগতা জানান। এতে স্বামী ক্ষিপ্ত হয়ে তাঁকে মারধর করে শাড়ি-গয়না রেখে কিশোরগঞ্জে বাবার বাড়ি পাঠিয়ে দেন।স্কলার্স প্রিপারেটরি স্কুল ও কলেজে কর্মশালাস্কলার্স প্রিপারেটরি স্কুল ও কলেজের উদ্যোগে ‘আলোকিত সন্তান গড়তে মা-বাবা ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের করণীয়’ শীর্ষক কর্মশালা গত বৃহস্পতিবার পাঁচলাইশ ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত হয়।কর্মশালার আগে কাতালগঞ্জ ও পাঁচলাইশ ক্যাম্পাসের ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়। প্রতিযোগিতার চারটি বিভাগে ১২ জন শিক্ষার্থী বিজয়ী হয়।কর্মশালায় মূল তিনটি বিষয়ে আলোচনা করেন কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের অর্গনিয়ার কাজী আবু জারজার, আবৃত্তিশিল্পী দিলরুবা খানম ও ডা. হাবীব জালাল উদ্দিন আহমেদ। এতে সভাপতিত্ব করেন পাঁচলাইশ ক্যাম্পাসের অধ্যক্ষ বেনজীর হান্নান। স্বাগত বক্তব্য দেন বিদ্যালয় পরিচালনা পর্ষদের নির্বাহী পরিচালক শারমিন খালেদ। এ ছাড়াও বক্তব্য দেন কাতালগঞ্জ ক্যাম্পসের বাংলা মিডিয়ামের অধ্যক্ষ মাহফুজুল করিম, পরিচালক কাজী রুনু বিলকিস, হোসনে আর বেগম, চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতার বিচারক উম্মে কুলসুম প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি।সাদার্ন ইউনিভার্সিটির ১৯তম সিন্ডিকেট সভাস্থায়ী ক্যাম্পাস নির্মাণকাজের অগ্রগতি ২০১৩-১৪ শিক্ষা বছরের জন্য ঘোষিত বাজেট অনুমোদন, আয়-ব্যয় হিসাবসহ একাধিক সিদ্ধান্ত অনুমোদনের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে সাদার্ন ইউনিভার্সিটির ১৯তম সিন্ডিকেট সভা। ২১ নভেম্বর ইউনিভার্সিটির সম্মেলনকেন্দ্রে এই সভা অনুষ্ঠিত হয়।উপাচার্য মোহাম্মদ আলীর সভাপতিত্বে সভায় সাদার্ন ট্রাস্ট চেয়ারম্যান খলিলুর রহমান, প্রতিষ্ঠাতা সরওয়ার জাহান, সহ-উপাচার্য শরীফুজ্জামান, অধ্যাপক কাজী মোস্তাইন বিল্লাহ, ড. সুলতান আহমেদ, সাবেক উপাচার্য মঈন উদ্দিন খান, অধ্যাপক মহিউদ্দিন চৌধুরী, ইসরাত জাহান, মন্তাজুল ইসলাম চৌধুরী প্রমুখ এ সময় উপস্থিত ছিলেন। বিজ্ঞপ্তি।চুয়েলসা কার্যকরী পরিষদ গঠিতচিটাগাং ইউনিভার্সিটি এক্স-ল স্টুডেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের (চুয়েলসা) কার্যকরী পরিষদের ২০১৩-২০১৪ সালের কার্যকরী কমিটি সম্প্রতি নগরের একটি হোটেলে গঠন করা হয়েছে। কমিটির সভাপতি মনোনীত হয়েছেন প্রথম ব্যাচের প্রতীক কুমার দেব এবং সাধারণ সম্পাদক মনোনীত হয়েছেন তৃতীয় ব্যাচের মোহাম্মদ মহিউদ্দিন। কমিটির অন্য কর্মকর্তারা হলেন সহসভাপতি মোহাম্মদ তৈয়ব, যুগ্ম সম্পাদক আলমগীর মুহাম্মদ ফারুকী, সাংগঠনিক সম্পাদক মোহাম্মদ জাফর ইকবাল, সহসাংগঠনিক সম্পাদক তেহসিন ইফতেখার ও আজিম সিদ্দিকী, অর্থ সম্পাদক শওকত আউয়াল চৌধুরী, দপ্তর সম্পাদক মো. মোজাম্মেল আলী চৌধুরী, প্রচার সম্পাদক রুবেল পাল, সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক সম্পাদক মো. সাইফুল আবেদীন।সদস্যরা হলেন আজিজুল হক, বদরুল হুদা, জাহিদুল করিম, মাহতাব উদ্দিন আহমদ চৌধুরী, কাজী আরাফাত উদ্দিন, তৃপ্তি দত্ত, হাছান মুরাদ, আলী ইমরান, আকবর আজিজ ও সাজ্জাতুন নেছা। বিজ্ঞপ্তি।লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং এর চিকিৎসাক্যাম্প সম্পন্নগ্রামপর্যায়ে গরিব লোকজনকে চিকিৎসাসেবা দেওয়ার লক্ষ্যে সম্প্রতি লায়ন্স ক্লাব অব চিটাগাং ও লিও ক্লাব অব চিটাগাং নাক, কান ও গলার চিকিৎসা ক্যাম্পের আয়োজন করে।চন্দনাইশের রহমানিয়া দরবার শরীফের বার্ষিক ওরশ উপলক্ষে আয়োজিত ক্যাম্পে চিকিৎসাসেবা দেন ডা. ললিত কুমার দত্ত ও গোপাল ভট্টাচার্য।ক্যাম্পে ১৩০ জন নারী-পুরুষ রোগীকে চিকিৎসা ও ওষুধ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সংগঠনের কর্মকর্তাদের মধ্যে সিলভেস্টার বার্নাডেট, মো. ইছমাইল চৌধুরী, মো. ইব্রাহিম, মহাদেব ঘোষ, আবু নাছের, গোলাম মাওলা চৌধুরী, নুরুল কাদের চৌধুরী, মাহফুজুর রহমান, নুরুল আবছার চৌধুরী, আলী হায়দার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।সাতকানিয়া ডায়াবেটিক সমিতির পদযাত্রা ও সুধী সমাবেশডায়াবেটিস রোগ সম্পর্কে সচেতনতা সৃষ্টির লক্ষ্যে সাতকানিয়া ডায়াবেটিক সমিতির উদ্যোগে পদযাত্রা ও সুধী সমাবেশ ২২ নভেম্বর সকালে সাতকানিয়া ডায়াবেটিক হাসপাতাল চত্বরে অনুষ্ঠিত হয়।পদযাত্রা শেষে সমিতির সভাপতি আবুল কালাম সামসুল হকের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথি ছিলেন সমিতির উদ্যোক্তা এম এ মোতালেব।বক্তব্য দেন হারুনুর রশিদ চৌধুরী, মোহাম্মদ জুবায়ের, নজরুল ইসলাম সিকদার, আবদুস শুক্কুর, আমানুল আলম, অ্যাডভোকেট মোহাম্মদ ইলিয়াছ, আবদুল গণি প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি।শিল্পী আজিজা খানমের স্মরণসভাচট্টগ্রাম চারুশিল্পী সম্মিলনের সদস্য শিল্পী আজিজা খানমের স্মরণসভা ২২ নভেম্বর বিকেল চারটায় অনুষ্ঠিত হয়। চট্টগ্রাম চারুকলা ইনস্টিটিউটের শিল্পী রশীদ চৌধুরী আর্ট গ্যালারি চত্বরে অনুষ্ঠিত এ স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন চট্টগ্রাম চারুশিল্পী কল্যাণ সংস্থার সভাপতি আহমেদ নেওয়াজ।অনুষ্ঠানের শুরুতে কোরআন তেলাওয়াত করেন নাসির খান। এরপর মঞ্চে বক্তব্য দেন ওসমান পাশা, সাফায়াত খান, মাহমুদা খানম, আইভি হাসান, আনোয়ার হোসেন ও সুব্রত বড়ুয়া। সভায় বক্তারা বলেন, আজিজা খানম ছিলেন একজন প্রকৃত শিল্পী। মানুষ ও সমাজের প্রতি দায়বদ্ধ থেকে শিল্পচর্চা করেছেন তিনি।আলোচনার এক পর্যায়ে শিল্পীকে নিয়ে দীর্ঘ কবিতা পড়ে শোনান আনোয়ার হোসেন। স্মরণসভা পরিচালনায় ছিলেন বিজন মজুমদার। বিজ্ঞপ্তি।আইআইইউসিতে প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় চুয়েট সেরাআন্তর্জাতিক ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় চট্টগ্রামের (আইআইইউসি) কম্পিউটার সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং (সিএসই) বিভাগ আয়োজিত আন্তবিশ্ববিদ্যালয় প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় সেরা হয়েছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় (চুয়েট)। গত শনিবার আইআইইউসি ক্যাম্পাসে অনুষ্ঠিত এই প্রতিযোগিতায় ছয়টি বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪টি দল অংশ নেয়।শনিবার সকালে প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করেন আইআইইউসির ভারপ্রাপ্ত সহ-উপাচার্য আর আই মোল্লা।বিশ্ববিদ্যালয়ের সিএসই বিভাগের প্রধান মো. মনিরুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সহযোগী অধ্যাপক মো. সামসুল আলম।প্রতিযোগিতায় চুয়েটের আলট্রা ভায়োলেট দল প্রথম হয়। দ্বিতীয় হয় চুয়েটের ডায়নামিক দল এবং চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সুপার সেইন্ট। মেয়েদের মধ্যে সেরা দল হয় আইআইইউসি ইয়ুথ পালস দল। প্রোগ্রামিং প্রতিযোগিতায় বিচারকের দায়িত্ব পালন করেন শাহরিয়ার মঞ্জুর ও তানভির আহসান। বিকেলে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে বিজয়ীদের মধ্যে পুরস্কার বিতরণ করা হয়। বিজ্ঞপ্তি।শিল্পকলায় যাত্রাপালা ও সার্কাস প্রদর্শনী কালচট্টগ্রাম জেলা শিল্পকলা একাডেমী প্রাঙ্গণে আগামীকাল শুক্রবার সন্ধ্যা ছয়টায় অনুষ্ঠিত হবে যাত্রাপালা রক্তাক্ত প্রান্তর। শহীদ মুনীর চৌধুরী রচিত এ নাটকের যাত্রাপালার নির্দেশনা দিয়েছেন সার্কাসশিল্পী সুলতান সেলিম।এ ছাড়া বিকেল সাড়ে চারটায় রয়েছে বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী ঢাকা অ্যাক্রোবেটিক দলের সার্কাস প্রদর্শনী। অনুষ্ঠান সবার জন্য উম্মুক্ত। বিজ্ঞপ্তি।কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে সেমিনারন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির উদ্যোগে কারিগরি শিক্ষার গুরুত্ব বিষয়ে সচেতনতামূলক সেমিনার ২৬ নভেম্বর বোয়ালখালী উপজেলা মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত হয়।শামসুদ্দীন শিশিরের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা খন্দকার নুরুল হক। বিশেষ অতিথি ছিলেন উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোহাম্মদ ইউনুছ। মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির চেয়ারম্যান আহসান হাবিব।অনুষ্ঠানে বক্তারা স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের কারিগরি শিক্ষায় শিক্ষিত করার ওপর জোর দেন। ঝরে পড়া শিক্ষার্থীদের জন্য সরকার ও বিশ্বব্যাংকের আর্থিক সহায়তায় বিনা খরচে ছয় মাসের চারটি ট্রেডে (মোবাইল সার্ভিসিং, ইলেকট্রিশিয়ান, ভূমি জরিপ, ফ্রিজ-এসি মেরামত) প্রশিক্ষণ, চার হাজার ২০০ টাকা বৃত্তি প্রদান, দক্ষ জনশক্তি হিসেবে দেশে বিদেশে উপস্থাপন এবং প্রশিক্ষণ শেষে চাকরির নিশ্চয়তার কথাও বলাও হয়। বিজ্ঞপ্তি।সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার ধ্বংসস্তূপ থেকে মাথার খুলিসহ আরও হাড়গোড় পাওয়া গেছে। পথশিশুরা রড ও বিভিন্ন পরিত্যক্ত মালামাল সংগ্রহ করতে গিয়ে এসব কুড়িয়ে পায়।এ নিয়ে গত ১৫ দিনে ওই ধ্বংসস্তূপ থেকে একটি কঙ্কাল, তিনটি মাথার খুলি ও বেশ কিছু হাড়গোড় পাওয়া গেল।সাভার মডেল থানা পুলিশ জানায়, গতকাল বেলা একটার দিকে পথশিশুরা ধসে পড়া রানা প্লাজার পেছনে ধ্বংসস্তূপে ভাঙা রড ও বিভিন্ন পরিত্যক্ত মালামাল কুড়াতে গিয়ে হাড়গোড় ও একটি মাথার খুলি কুড়িয়ে পায়।
পঞ্চগড় সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের (একাংশের) মতবিনিময় সভায় সাবেক মন্ত্রী মির্জা গোলাম হাফিজের জামাতা শিল্পপতি মো. মুনির হোসেনকে আগামী সংসদ নির্বাচনে পঞ্চগড়-১ আসনের প্রার্থী ঘোষণা করা হয়েছে।গতকাল শুক্রবার সকালে শহরের ধাক্কামারা এলাকার আবেদা হাফিজ স্কুল অ্যান্ড কলেজ মাঠে অনুষ্ঠিত সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের মতবিনিময় সভায় এ ঘোষণা দেওয়া হয়।সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মো. জাকির হোসেনের সভাপতিত্বে মতবিনিময় সভায় গোলাম হাফিজের ছেলে মির্জা গোলাম এরফান মো. মুনির হোসেনকে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন। এ সময় তিনি বলেন, গত সংসদ নির্বাচনে তাঁকে এ আসনে নির্বাচন করার জন্য শেখ হাসিনা মনোনয়ন দিয়েছিলেন। পারিবারিক কারণে তিনি নির্বাচন না করে মজাহারুল হক প্রধানকে ছেড়ে দেন। সর্বশক্তি নিয়োগ করে তাঁকে নির্বাচনে বিপুল ভোটের ব্যবধানে জেতানো হয়। কিন্তু তিনি দলীয় নেতা-কর্মী ও এলাকার মানুষের প্রত্যাশা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।মুনির হোসেন বলেন, সুযোগ, সমর্থন ও মনোনয়ন পেলে আওয়ামী লীগের প্রার্থী হিসেবে পঞ্চগড়-১ আসনে নির্বাচন করতে চান। তিনি সবার সমর্থন চাইলে উপস্থিত সবাই হাত তুলে সমর্থন জানান। সভায় জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম, সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বিপেন চন্দ্র রায়, পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আবদুল কাদের, জেলা যুবলীগের সাধারণ সম্পাদক মখলেছার রহমান এবং ইউনিয়ন ও ওয়ার্ড পর্যায়ের আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।আগামী বছরের টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচ হবে না কক্সবাজারে। সৈকতছোঁয়া গলফ মাঠে প্রায় ২০ কোটি টাকায় নির্মীয়মাণ শেখ কামাল আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ম্যাচ হবে, এমনটাই আশা করেছিল সমুদ্রশহরের জনগণ। কিন্তু সূচিতে বিশ্বকাপের কোনো ম্যাচ নেই। আর এটা জেনে ফুঁসে উঠেছে গোটা কক্সবাজার। এখানে ম্যাচ আয়োজনের দাবিতে মাঠে নেমেছে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।‘কক্সবাজার বাঁচাও আন্দোলনের’ উদ্যোগে কাল বেলা ১১টায় জেলা প্রশাসক কার্যালয় চত্বরে হয়েছে মানববন্ধন ও সমাবেশ।মানববন্ধন কর্মসূচিতে অংশ নেয় কক্সবাজার জেলা ক্রীড়া সংস্থা, সিভিল সোসাইটি, সাংবাদিক ইউনিয়ন, জেলা উদীচী, জেলা আইনজীবী সমিতি, কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদ, কক্সবাজার সাংবাদিক সংসদ, প্রথম আলো বন্ধুসভা, কক্সবাজার জেলাবাসী, বাংলাদেশ ক্রীড়া লেখক সমিতি, ঝাউতলা সৈকত ক্রীড়া সংঘসহ বিভিন্ন সামাজিক সংগঠন।স্থানীয় সাংসদ লুৎফর রহমান বলেন, ‘অদৃশ্য কারণে কক্সবাজার ভেন্যু বাতিল করা হয়েছে। এতে জেলার ২৪ লাখ মানুষ হতাশ। ২৮ অক্টোবর আইসিসির প্রতিনিধিদলের কক্সবাজার ভেন্যু পরিদর্শনের সিদ্ধান্ত ছিল। কিন্তু রহস্যজনক কারণে ভেন্যু না দেখে বিশ্বকাপ আসর থেকে কক্সবাজারকে বাদ দেওয়া হয়েছে।’জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক জসিমউদ্দিন খুব হতাশ। বক্তব্য দিতে গিয়ে কান্নায় ভেঙে পড়েন তিনি। ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘পাঁচ বছর ধরে এই ক্রিকেট স্টেডিয়ামের পেছনে কষ্ট করছি। উদ্দেশ্য ছিল বিশ্বকাপের ম্যাচ পাব। কিন্তু সবকিছু ঠিকঠাক থাকার পরও কেন কক্সবাজার ভেন্যু বাদ গেল জানতে চাই।’মানববন্ধন ও প্রতিবাদ কর্মসূচি শেষে ভেন্যু স্থাপনের দাবিতে জেলা প্রশাসকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বরাবর স্মারকলিপি পাঠানো হয়। স্মারকলিপিতে দাবি করা হয়, কক্সবাজারে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আসর বসলে সারা বিশ্বে সমুদ্রসৈকতের পর্যটনশিল্পের বিকাশ ঘটবে। বাড়বে বিদেশি বিনিয়োগ।যশোর শহরের ইজিবাইকচালক সংগ্রামী বীথি বেগমের হাতে গতকাল বুধবার দুটি ইজিবাইকের চাবি তুলে দেওয়া হয়েছে। কোহিনূর কেমিক্যাল কোং (বাংলাদেশ) লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক রেজাউল করিম ও নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক ঢাকার একজন ব্যবসায়ীর সহায়তায় এ দুটি বাইক দেওয়া হয় তাঁকে।যশোরের পুলিশ সুপার কার্যালয় চত্বরে এক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে সকালে একটি বাইকের চাবি হস্তান্তর করেন পুলিশ সুপার (এসপি) জয়দেব ভদ্র। বিকেলে অপর বাইকটিও এ সংগ্রামী নারীর কাছে হস্তান্তর করা হয়।এ সময় পুলিশ সুপার জয়দেব ভদ্র প্রথম আলো পত্রিকা তাঁকে নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করায় পত্রিকা কর্তৃপক্ষকে ধন্যবাদ জানান।অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন, কোহিনূর কেমিক্যাল লিমিটেডের ভাইস প্রেসিডেন্ট (অডিট অ্যান্ড সার্ভে) এম এ গাফ্ফার, সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেশমা শারমিন, বীথি বেগম, যশোরে প্রথম আলোর আলোকচিত্রী এহ্সান-উদ্-দৌলা প্রমুখ।প্রথম আলো পত্রিকায় বীথি বেগমকে নিয়ে ‘ইজিবাইকে কঠিন সংগ্রাম’ ও ‘এসপি সাহেব আমারে স্যালুট করলেন’ শিরোনামে দুটি প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়। এরপর অনেকেই তাঁকে সহায়তা দিতে এগিয়ে আসেন।ময়মনসিংহে অবস্থিত বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে গতকাল শনিবার দুপুরে নতুন একটি ছাত্রীহলের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। চার বছর আগে থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রীদের আবাসন সংকট দেখা দেয়। এর আগে একটি ছাত্রহলকে ছাত্রীহল বানানোর চেষ্টা করে ব্যর্থ হয় প্রশাসন। পরে নতুন হল নির্মাণের প্রক্রিয়া শুরু হয়। গতকাল দুপুরে উপাচার্য মো. রফিকুল হক নতুন হলটির ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন।বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিনিধি
বউকে তালাক দিয়েছেন। ক্ষতিপূরণ দিতে পকেট তো খালি হবেই। সেই সঙ্গে বউয়ের হাতে উত্তমমধ্যম খাওয়াটা নিশ্চয় মধুর কোনো অভিজ্ঞতা নয়! অথচ বরিস বেকারের জীবনে ঘটেছে এমনটাই। সাবেক স্ত্রী বারবারা ফেলটুসের সঙ্গে সম্পর্কটা চুকে ফেলতে গিয়ে জার্মানির সাবেক টেনিস তারকার খরচ হয় এক কোটি ৮০ লাখ পাউন্ড। সম্পর্ক চুকে যাওয়ার ১৩ বছর পর বেকারই বলেছেন, তাঁর দুই ছেলের মা ফেলটুস আচমকাই তাঁর ওপর পাগলের মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন। তখন ছয় বছরের ছেলে নোয়াহ যুদ্ধরত বাবা-মাকে ছাড়ানোর চেষ্টাও করে। ব্রিটিশ ট্যাবলয়েড ডেইলি এক্সপ্রেস-এর খবর, বেকার তাঁর দ্বিতীয় আত্মজীবনী লাইফ ইজ নট অ্যা গেম-এ ছাড়াছাড়ির বিষয়ে বিস্তারিত বয়ানই নাকি করেছেন। ওয়েবসাইট।কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার বাংপাই গ্রামে রূপা আক্তার (১৪) নামের এক গৃহপরিচারিকার মৃত্যু নিয়ে রহস্যের সৃষ্টি হয়েছে। গতকাল সোমবার সকালে ওই গ্রামের প্রয়াত নুরুল ইসলামের বাড়ি থেকে তার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ।রূপা আক্তার ভোলা জেলার লালমোহন উপজেলার রহিমপুর গ্রামের জাফর উল্লাহর মেয়ে। পুলিশ জানায়, নুরুল ইসলামের মেয়ে ফাতেমা বেগমের ঢাকার বাসায় রূপা কাজ করত। ঈদুল আজহা উপলক্ষে ফাতেমা বাবার বাড়িতে বেড়াতে এলে রূপাকেও সঙ্গে নিয়ে আসেন। গত রোববার রাতে গোসলখানায় ওড়না পেঁচিয়ে রূপা আত্মহত্যা করে বলে পরিবারটি দাবি করে। গতকাল সোমবার সকালে রূপার লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ কুমিল্লা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।যশোর সদর উপজেলার উপশহর ইউনিয়ন জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি আবদুল হাই সিদ্দিকী ওরফে বুলবুলকে (৩০) গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। গতকাল বুধবার রাত পৌনে আটটার দিকে নিজের বাড়িতে বসে কম্পিউটারে কাজ করার সময় ঘরের জানালা দিয়ে মাথায় গুলি করা হয়।বুলবুলের বাড়ি উপশহর ট্রাকস্ট্যান্ডসংলগ্ন এলাকায়। হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে আজ বৃহস্পতিবার যশোর জেলায় সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডেকেছে জেলা জামায়াতে ইসলামী। জামায়াত-শিবিরের কর্মীরা রাতে বিক্ষোভ করেছেন। মিছিলটি যশোর জেনারেল হাসপাতাল চত্বর থেকে বের হয়ে শহরের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ সড়ক প্রদক্ষিণ করে। মিছিল থেকে হরতাল পালনের আহ্বান ও হত্যাকারীদের গ্রেপ্তারের দাবি জানানো হয়। এ সময় গোটা শহরে অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। আওয়ামী লীগ কার্যালয়সহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়।পুলিশ ও দলীয় নেতাদের কাছ থেকে জানা গেছে, বুলবুল রাতে নিজের ঘরে বসে কম্পিউটারে কাজ করছিলেন। এ সময় তাঁকে লক্ষ্য করে দুর্বৃত্তরা ঘরের জানালা দিয়ে গুলি করে পালিয়ে যায়। গুলি বুলবুলের মাথায় বিদ্ধ হয়। এতে ঘটনাস্থলেই তিনি মারা যান। ময়নাতদন্তের জন্য লাশ যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালের মর্গে নেওয়া হলে নেতা-কর্মীরা হাসপাতাল চত্বরে জড়ো হতে থাকেন। মুহূর্তে শহরজুড়ে অজানা আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে।জেলা জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি ইদ্রিস আলী বলেন, হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে যশোর জেলায় বৃহস্পতিবার সকাল-সন্ধ্যা হরতাল ডাকা হয়েছে। ঘরের জানালা দিয়ে গুলি করে বুলবুলকে হত্যা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান।সহকারী পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) রেশমা শারমিন ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, কী কারণে কে বা কারা হত্যাকাণ্ডটি ঘটিয়েছে তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।সার্কভুক্ত দেশগুলোর নির্বাচন পর্যবেক্ষকদের জন্য এক কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে নির্বাচন কমিশন। দেশগুলো নির্বাচন পর্যবেক্ষণে এলে তাদের থাকা-খাওয়া বাবদ এই টাকা ব্যয় করা হবে।নির্বাচন কমিশন সচিবালয় সূত্র জানায়, দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণের জন্য কমিশন ইতিমধ্যে সার্কভুক্ত দেশগুলোর নির্বাচন কমিশনের সংগঠন ফোরাম অব ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বডিজ অব সাউথ এশিয়ার (ফেমবোজা) সঙ্গে যোগাযোগ করেছে। এই সংগঠনের সদস্য হচ্ছে বাংলাদেশসহ আফগানিস্তান, ভারত, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কার নির্বাচন কমিশন। বর্তমানে ভুটানের প্রধান নির্বাচন কমিশনার এই ফোরামের প্রধান। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে নির্বাচন বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে ২০১০ সালে ঢাকায় এক সম্মেলনের মাধ্যমে ফেমবোজার যাত্রা শুরু হয়।সূত্র জানায়, কমিশন ফেমবোজার সাতটি দেশের দুজন করে মোট ১৪ জন পর্যবেক্ষককে আমন্ত্রণ জানিয়েছে। কিন্তু এখন পর্যন্ত ফেমবোজা পর্যবেক্ষণে আসার বিষয়টি নিশ্চিত করেনি। তারা নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করলে কী ধরনের সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যাবে—তা জানতে চেয়েছে। এদিকে ফেমবোজা যাতে নির্বাচন পর্যবেক্ষণে আসে, সে জন্য জোর তৎপরতা চালানো হচ্ছে।সাধারণত ইউরোপ ও আমেরিকার পর্যবেক্ষকেরা নিজেদের খরচে নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করে থাকে। তবে এবার ইউরোপ ও আমেরিকার বিভিন্ন দেশ ও সংগঠন একতরফা নির্বাচন হওয়ায়, নির্বাচনের পরিবেশ না থাকায় এবং নিরাপত্তার প্রশ্ন তুলে সংসদ নির্বাচন পর্যবেক্ষণ না করার সিদ্ধান্তের কথা নির্বাচন কমিশনকে জানিয়েছে। সেই প্রেক্ষাপটে কমিশন ফেমবোজার নেতৃত্বে সার্কভুক্ত দেশগুলোর পর্যবেক্ষকদের নিয়ে আসার পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে।এদিকে দেশীয় পর্যবেক্ষকদের সংগঠন ইলেকশন ওয়ার্কি গ্রুপ (ইডব্লিউজি) নির্বাচন পর্যবেক্ষণ করবে কি না, সে বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশনকে কিছু জানায়নি। কমিশন ইডব্লিউজিকে পর্যবেক্ষণে নিয়ে আসার জন্য চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্র ধ্বংস করা নিয়ে জাতিসংঘে একটি প্রস্তাবের ব্যাপারে বৃহস্পতিবার মতৈক্যে পৌঁছেছে নিরাপত্তা পরিষদের পাঁচ স্থায়ী সদস্যদেশ।যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্সের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা একটি প্রস্তাবের ব্যাপারে সমঝোতার বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।প্রস্তাবটির ওপরে নিরাপত্তা পরিষদে ভোটাভুটি গতকাল শুক্রবার রাতেই অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে জানিয়েছিলেন কূটনীতিকেরা। প্রস্তাবটির ব্যাপারে পূর্ণাঙ্গ পরিষদ কীভাবে সাড়া দেবে এবং সিরিয়ার রাসায়নিক অস্ত্রের নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং তা ধ্বংস করা প্রশ্নে কতটা তাড়াতাড়ি পরিকল্পনা নেওয়া যাবে, তা নির্ভর করছে ওই ভোটাভুটির ওপরই।জাতিসংঘে ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূত মার্ক লায়াল গ্র্যান্ট টুইটারে জানান, নিরাপত্তা পরিষদের ভেটো ক্ষমতাসম্পন্ন পাঁচ সদস্যরাষ্ট্র একটি ‘বাধ্যতামূলক ও প্রয়োগযোগ্য প্রস্তাবের’ ব্যাপারে মতৈক্যে পৌঁছেছে। আর মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের একজন জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তা বলেছেন, ‘একটি বলিষ্ঠ বাধ্যতামূলক ও প্রয়োগযোগ্য প্রস্তাবের’ ব্যাপারে রাশিয়ার কর্মকর্তারা সম্মত হয়েছেন।খসড়া প্রস্তাবের যে কপি বার্তা সংস্থা অ্যাসোসিয়েট প্রেস (এপি) হাতে পেয়েছে, তাতে একটি বিষয় স্পষ্ট। তা হলো: সিরিয়া যদি কথামতো তার রাসায়নিক অস্ত্র পরিত্যাগের প্রতিশ্রুতি না মেনে চলে, তবে দেশটির বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের কোনো কথা নেই খসড়া প্রস্তাবটিতে। বরং প্রস্তাবটিতে এই বলা আছে যে, সিরিয়া যদি প্রতিশ্রুতি পূরণে ব্যর্থ হয় বা রাসায়নিক হামলা চালায়, তবে তখন নিরাপত্তা পরিষদ জাতিসংঘ সনদের সাত নম্বর অনুচ্ছেদ অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবে। বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে সাত নম্বর অনুচ্ছেদে সামরিক ও অসামরিক উভয় ব্যবস্থা গ্রহণের অনুমতি আছে। তবে সিরিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্র রাশিয়া সবসময়ই তাদের বিরুদ্ধে শক্তি প্রয়োগের বিরোধিতা করে আসছে।নতুন প্রস্তাব নিয়ে যেসব বিরোধ রয়েছে, তা মিটমাটে শেষ প্রচেষ্টার অংশ হিসেবে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী জন কেরি গত বৃহস্পতিবার রুশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী সের্গেই লাভরভের সঙ্গে বৈঠক করেন। ওই বৈঠকের পরপরই প্রস্তাবটির বিষয়ে মতৈক্যে পৌঁছানোর বিষয়টি ঘোষণা করা হয়।আরও সাতটি রাসায়নিক হামলা?: সিরিয়ায় আরও সাতটি রাসায়নিক হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গতকাল নতুন করে এসব তদন্তের কাজ শুরু করেছেন জাতিসংঘের রাসায়নিক অস্ত্রবিশেষজ্ঞরা। এর মধ্যে তাঁরা গতকাল তিনটি নতুন এলাকায় তদন্ত চালান। এ তিনটি স্থানে ২১ আগস্টের আলোচিত হামলার পর কোনো একসময় রাসায়নিক হামলা চালানো হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। এপি, বিবিসি ও এএফপি।অল্প একটু আলো ছড়ায়। এতেই বদলে যায় ঘরের চেহারা। টেবিল ল্যাম্প ব্যবহারের মজাটাই এখানে। মায়াবী পরিবেশ তৈরিতে যেন প্রতিযোগিতা চলে বিভিন্ন নকশার ল্যাম্পশেডগুলোর মধ্যে। তবে ঠিকঠাক যত্ন না নিলে কমে যেতে পারে ল্যাম্পশেডের সৌন্দর্য।ঘর সাজানোর উপকরণ হিসেবে টেবিল ল্যাম্পের জনপ্রিয়তা সমসময়ই আছে।বাজার ঘুরে নকশার বাহার দেখলে সেটা ভালোই বোঝা যায়।ল্যাম্পশেডগুলোতে সিল্ক, সুতি, খাদির কাপড়ের ব্যবহার চলছে অনেক দিন ধরেই। আধুনিক রূপ আনতে সহায়তা করছে ভিন্ন ধরনের কাগজ। যাত্রার ডিজাইনার তাজিয়া সুলতানা বলেন, পুঁতি, তালপাতা, খেজুরপাতার পাশাপাশি শীতলপাটির উপকরণ দিয়ে টেবিল ল্যাম্প ও ল্যাম্পশেড বানানো হচ্ছে। হাতি-ঘোড়ার ছবি আঁকা হচ্ছে ল্যাম্পশেডের ওপরে। নান্দনিকতা আনতে ল্যাম্পশেডে একরঙা কাপড়ের পাশাপাশি টাই-ডাইয়ের নকশা, গামছার ওপর মোমবাটিকের কাজ করা হচ্ছে।যে জিনিস তৈরিতে এত আয়োজন, সেটার যত্ন-আত্তি করা খুব সহজ।সম্ভব হলে দিনে একবার ল্যাম্পশেডগুলো মুছতে হবে। তাহলে এক থেকে দেড় বছরের মধ্যে পানি দিয়ে ধোয়ার ঝামেলার মধ্যে আর পড়তে হবে না। তবে ল্যাম্পশেড পরিষ্কারের সময় কখনোই ভেজা কাপড় ব্যবহার না করার পরামর্শ দিলেন আর্টিফ্যাক্টসের মহাব্যবস্থাপক মো. আশরাফ।আরো কিছু পরামর্শ পরিষ্কার করার সময় শেডটা আলতোভাবে ধরে তারপর পরিষ্কার করুন। না হলে মোছার সময় শেডটি তার অবস্থান থেকে সরে যেতে পারে। সিল্কের চেয়ে সুতি কাপড়ের শেড তাড়াতাড়ি ময়লা হয়ে যায়। ল্যাম্পশেড ধোয়ার সময় টুথব্রাশ ও গুঁড়া সাবান ব্যবহার করুন। প্রথমে শুকনা কাপড় দিয়ে শেডের ধুলা ঝেড়ে নিন। গুঁড়া সাবান পানিতে গুলিয়ে নিন। টুথব্রাশের মাধ্যমে ওপর থেকে নিচে, নিচে থেকে ওপরে ঘষে ঘষে পরিষ্কার করুন। এরপর পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে। ধোয়ার পর বাতাসে শুকান। রোদের মধ্যে শুকালে শেডটির কাপড় আঁটোসাঁটো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে। পুঁতি, কাগজ বা অন্য কোনো উপকরণ হলে ব্রাশ দিয়ে ধীরে ধীরে পরিষ্কার করুন। খেয়াল রাখতে হবে যেই ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার করছেন, সেটিতে যেন ময়লা না থাকে। শেডটির ভেতরের দিকটিও পরিষ্কার করতে হবে। না হলে সঠিকভাবে আলো পাওয়া যাবে না। প্রয়োজনে বাল্ব অথবা টেবিল ল্যাম্পের বৈদ্যুতিক তারটি সকেট থেকে খুলে নেবেন।যশোর সদর উপজেলার রামনগর ইউনিয়ন যুবলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক নাজমুল ইসলামের (৩০) দুই পায়ের রগ কেটে দিয়েছে দুর্বৃত্তরা। গতকাল বুধবার বেলা ১১টার দিকে যশোর-সাতক্ষীরা মাহসড়কের সদর উপজেলার কুয়াদা বাজারে এ ঘটনা ঘটে।নাজমুল সদর উপজেলার সিরাজসিংহা গ্রামের আবু বক্কার গাজীর ছেলে। মুমূর্ষু অবস্থায় তাঁকে প্রথমে যশোর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতাল এবং পরে খুলনার একটি বেসরকারি হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বাজারের একটি দোকান থেকে চা পান করে নামজুল ও তাঁর মামা বরকত ফিরছিলেন। এ সময় পথে দুর্বৃত্তরা পেছন থেকে নাজমুলকে ধরে তাঁর দুই হাতের বাহু ও মাথায় এলোপাতাড়ি কোপায় এবং দুই পায়ের রগ কেটে দেয়।তিনি ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ড যুবলীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছেন।তীব্র শীতে কাঁপছে উত্তরাঞ্চলের মানুষ। রাতে বৃষ্টির মতো শিশির ঝরছে। গরিব মানুষের দুর্ভোগ চরমে পৌঁছেছে। কোথাও কোথাও গতকাল শনিবারও সূর্যের দেখা মেলেনি। মানুষজন ছুটছে গরম কাপড়ের দোকানগুলোতে। শীতজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। বহু স্থানে ঘন কুয়াশার কারণে হেডলাইট জ্বালিয়ে যানবাহন চলাচল করছে। আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:রাজশাহী: রাজশাহীর বড়কুঠি ঘাট। নিচে নদী ঢেকে আছে কুয়াশায়। ঘাটে দাঁড়িয়ে কৃষক নাজমুল হক। নিচে কিছু দেখছেন না। চেঁচিয়ে বলছেন, ‘আলাদ্দির লা (নৌকা) কুনখান?’ নিচ থেকে কেউ কথা বলছেন না। রাজশাহীতে তখন সকাল ছয়টা। সে সময় তাপমাত্রা ছিল ৯ দশমিক ৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। সূর্য ওঠেনি। এর তিন ঘণ্টা পর সকাল নয়টার দিকে কুয়াশা একটু ফিকে হলে দেখা গেল নৌকার গলুইয়ে ঠায় বসে কজন লোক। তাঁদের মুখ-মাথা চেনার উপায় নেই। গুটিসুটি হয়ে আছেন। নাজমুল জানান, চর মাঝারদিয়াড় থেকে টমেটো নিয়ে এসেছিলেন রাজশাহীতে। রাতে আড়তেই ছিলেন। সকালে উঠে বাড়ি যাওয়ার জন্য নৌকা পাচ্ছেন না। শীতে কুয়াশায় কারও নড়াচড়া নেই।সিরাজগঞ্জ: গত তিন দিন সূর্যের দেখা মেলেনি। প্রচণ্ড কুয়াশার কারণে কোথাও কোথাও বৃষ্টির মতো শিশির ঝরছে। যে কারণে সড়ক-মহাসড়কে যানবাহন চলাচল কমে গেছে। সব যানবাহনকে হেডলাইট জ্বালিয়ে চলাচল করতে দেখা গেছে। গ্রামাঞ্চলে শিশুদের মধ্যে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বেড়ে গেছে। মানুষজনকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণ করতে দেখা গেছে। এ ছাড়া গত দুই দিনে সিরাজগঞ্জ জেনারেল হাসপাতালে ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হয়ে দেড় শতাধিক রোগী চিকিত্সা নিয়েছেন বলে জানা গেছে।রায়গঞ্জ (সিরাজগঞ্জ): গতকাল উপজেলার আদিবাসী অধ্যুষিত ধামাইনগর ও সোনাখাড়া ইউনিয়ন ঘুরে দেখা যায়, আদিবাসী পরিবারগুলো সাধারণত মাটির তৈরি ঘরে বসবাস করে। মাটির ঘরে শীতের তীব্রতা আরও বেশি। ধলজান গ্রামের সুনীল চন্দ্র মাহাতো জানান, প্রতি বছরই শীতে খুব কষ্ট করতে হয়। কেউ দয়া করে একটা শীতের কাপড় দিলে আরাম হতো। সূর্যমনি মাহাতো জানান, শীত যেন হাড়ে গিয়ে লাগে। গরম কাপড় পেলে খুব উপকার হতো।লালপুর (নাটোর): উপজেলায় একটি বেসরকারি সংস্থার উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরণ করা হয়েছে। ঊর্মি গ্রুপের সহায়তায় ও ইকো ট্রাভেলার্সের বাস্তবায়নে উপজেলার নবীনগর, শিবনগর, কাজীপাড়া, তিলকপুর, নূরুল্লাপুর ও লক্ষ্মীপুর গ্রামের ১৫৮ জন শীতার্তের মধ্যে কম্বল বিতরণ করা হয়। কম্বল পেয়ে কাজীপাড়া গ্রামের রজব মণ্ডল ও আনোয়ারা বেওয়া বলেন, ‘জাড়ে (শীতে) জান বারা (বেরিয়ে) যাচ্ছিল। বাঁচার আশা ছিল না। কম্বল পাওয়ায় এবারের জাড়ডা (শীতটা) পার করতে পারবো।’শিবগঞ্জ (বগুড়া): শীতবস্ত্র বিক্রেতাদের মাথায় হাত ছিল এত দিন। কেউ কেউ আবার বলছিলেন, ‘শীত তো পড়ছেই না। তবে কি এবার শীতবস্ত্র আলমারিতেই রয়ে যাবে?’ চিত্রটা বদলে গেল গত বৃহস্পতিবার সকাল থেকে। উপজেলায় হঠাত্ করেই শুরু হয়েছে শৈত্যপ্রবাহ। জেঁকে বসেছে কনকনে শীত। তীব্র শীতের কারণে লেপ-তোশকের দোকানের পাশাপাশি মার্কেটগুলোতে গরম কাপড়ের দোকানে ভিড় করছেন মধ্যবিত্ত ও উচ্চবিত্ত ক্রেতারা। আর নিম্নমধ্যবিত্ত ও শ্রমজীবী দরিদ্র মানুষেরা যাচ্ছেন ফুটপাতে পসরা সাজিয়ে বসা কম দামের শীতবস্ত্র বিক্রেতাদের কাছে। তবে অন্য বছরের চেয়ে এবার কাপড়ের দাম বেশি বলে জানালেন ক্রেতারা।জয়পুরহাট: কনকনে ঠান্ডা বাতাস ও প্রচণ্ড কুয়াশায় জয়পুরহাটের জনজীবন স্থবির হয়ে পড়ে। ঠান্ডা বাতাস আর সূর্যের দেখা না পাওয়ায় জয়পুরহাটের হাড়কাঁপানো শীত জেঁকে বসেছে। অসহায় দরিদ্র ছিন্নমূল বস্তিবাসী ও নিম্ন আয়ের খেটে খাওয়া মানুষেরা শীতে দুর্ভোগে পড়েছে। দরিদ্র শীতার্ত মানুষেরা সন্ধ্যায় ও সকালে খড়কুটা জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছে।
বিরক্তিকর! চরম বিরক্তিকর! নিজেই নিজেকে বিরক্তিকর বলছেন এক নামী ডাচ রেফারি। রেফারি পিটার ভিঙ্ক নিজেকে ধিক্কার তো দেবেনই, গত পরশু ডাচ ফুটবল তাঁর সৌজন্যেই যে সাক্ষী হলো হাস্যকর এক কাণ্ডের। ডাচ কাপে হিরেনভিন ও টুয়েন্টে এনশেডের ম্যাচের দ্বিতীয়ার্ধে ফাউল করেছিলেন এক খেলোয়াড়। হলুদ কার্ড বের করার জন্য পকেটে হাত দিলেন, বের করলেন খালি হাতই। কার্ড যে খুঁজে পাননি! পাবেন কীভাবে, কার্ড যে রয়ে গেছে ড্রেসিংরুমে ফেলে আসা ঘামে ভেজা প্রথম শার্টে। তবে পার পাননি হিরেনভিন ডিফেন্ডার জোয়ি ভন ডেন বার্গ, খাতায় ‘হলুদ অপরাধী’ হিসেবে ঠিকই নাম উঠে গেছে তাঁর। রয়টার্স।৭১ টেলিভিশনসহ বিভিন্ন সম্প্রচার ও মুদ্রণ মাধ্যমের সাংবাদিকদের ওপর হামলার প্রতিবাদে মৌলভীবাজারে বিক্ষোভ ও সমাবেশ হয়েছে। গতকাল সোমবার দুপুরে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাবের সামনে এই বিক্ষোভ ও প্রতিবাদ সমাবেশের আয়োজন করে মৌলভীবাজার প্রেসক্লাব।প্রেসক্লাবের সভাপতি এম এ সালামের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক এস এম উমেদ আলীর সঞ্চালনায় এ সময় বক্তব্য দেন প্রেসক্লাবের সহসভাপতি আবদুল হামিদ মাহবুব, রাধাপদ দেব, সৈয়দ মহসীন পারভেজ প্রমুখ। বক্তারা বলেন, ‘গণমাধ্যম ও সাংবাদিকদের ওপর হামলা তথ্যের অবাধ প্রবাহের ধারাকে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। এটা গণতন্ত্রের জন্য ক্ষতিকর।’অবিলম্বে হামলাকারীদের গ্রেপ্তার ও শাস্তির দাবি জানানো হয় সমাবেশ থেকে।প্রায় ৩০ ঘণ্টা মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে হেরে গেলেন লেগুনা চালক মোজাম্মেল হক। আজ রাত সাড়ে ১২টায় ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বার্ন ইউনিটের নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) মারা যান তিনি।গতকাল মঙ্গলবার রাত আটটায় রামপুরার দক্ষিণ বনশ্রীতে মোজাম্মেলের লেগুনায় আগুন দেয় অবরোধ সমর্থনকারীরা। এতে তাঁর শরীরের ৬০ শতাংশ পুড়ে যায়। কাঁদতে কাঁদতে মোজাম্মেলের ফুফু মোসাম্মাত সাজেদা প্রথম আলো ডটকমকে বলেন,‘ এখন আমাদের সবার গায়ে আগুন ধরাইয়া মাইরা ফ্যালান। আমাদের আর কিছুই নাই।’ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্র জানায়, বড় ভাই ও মায়ের সঙ্গে খিলগাঁয়ের নন্দী পাড়ায় থাকতেন মোজাম্মেল। নয় মাস ধরে লেগুনা চালাচ্ছিলেন তিনি। তাঁর মৃত্যুতে এখন বার্ন ইউনিটে বইছে স্বজনদের আর্তনাদ-কান্না।রাজশাহীর পবা উপজেলার ভুগরইল এলাকায় গতকাল শনিবার সড়ক দুর্ঘটনায় এক কিশোরসহ দুজন নিহত হয়েছেন। একইদিন নাটোরের লালপুরে জহুরা বেগম (৬০) নামে এক নারী নিহত হয়েছেন।নগরের শাহ্ মখদুম থানা পুলিশ জানায়, ঘন কুয়াশার মধ্যে সকাল পৌনে ছয়টার দিকে রাজশাহী থেকে ছেড়ে যাওয়া নওগাঁগামী একটি যাত্রীবাহী বাস ওই এলাকায় বিপরীত দিক থেকে আসা সিএনজিচালিত অটোরিকশাটিকে ধাক্কা দেয়। এতে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে অটোরিকশাটি উল্টে যায়। এ সময় সায়েম আলী (১৪) ও সুমী খাতুন (২২) গুরুতর আহত হন। পরে হাসপাতালে যাওয়ার পথে সুমী মারা যান। আর হাসপাতালে নেওয়ার পর চিকিত্সাধীন অবস্থায় সায়েমের মৃত্যু হয়।এদিকে বেলা ১১টার দিকে লালপুরের লক্ষ্মীপুর গ্রামে বাড়ির সামনের রাস্তা পার হওয়ার সময় মাইক্রোবাস চাপায় নিয়াত খামারুর স্ত্রী জহুরা বেগম নিহত হন।
‘মেধাবিকাশে দাবা’ স্লোগান নিয়ে গত বৃহস্পতিবার রাতে পঞ্চগড়ে যমুনা এলপি গ্যাস দাবা চ্যাম্পিয়ন লিগ শুরু হয়েছে।বিজনেস মিডিয়ার আয়োজনে তেঁতুলিয়া রোডের বিজনেস মিডিয়া চত্বরে উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন পঞ্চগড় মকবুলার রহমান সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ দেলওয়ার হোসেন প্রধান। বিশিষ্ট দাবাড়ু এম এ হান্নানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে পঞ্চগড় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সফিকুল আলম, ময়দানদীঘি ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক কুদরত ই খুদা প্রমুখ বক্তৃতা করেন।লিগ পর্যায়ের এই প্রতিযোগিতায় বাছাই পর্বের ৮ জনসহ মোট ১৬ জন দাবাড়ু অংশ নেন। আয়োজকেরা জানিয়েছেন, গভীর রাত পর্যন্ত অনুষ্ঠিত আটটি খেলার মধ্যে সাতটিতে হিটলার, মজনু, ছবি, লাবু, হিলারি, রেজাউল করিম ও রবিউল ইসলাম জয়লাভ করেন।হ্যাটট্রিক শিরোপার হাতছানি। এবারের প্রিমিয়ার দাবা লিগ নিয়ে তাই রোমাঞ্চিত মোহামেডানের গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ। আগামী ২ নভেম্বর শুরু হবে এই মৌসুমের প্রিমিয়ার লিগ। অংশ নিচ্ছে বর্তমান চ্যাম্পিয়ন মোহামেডান, রানার্সআপ দুরন্ত রাজশাহী এবং তিতাস ক্লাব, একসেস গ্রুপ, নারায়ণগঞ্জ প্রিতম প্রিজম, এয়ার ডেসটিনি লিমিটেড, বাংলাদেশ বিমান, ফেইথ চেস ক্লাব, লিওনাইন ও গোপালগঞ্জ চেস ক্লাব।মোহামেডান ক্লাবে খেলছেন দেশের দুই গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ ও জিয়াউর রহমান, আন্তর্জাতিক মাস্টার মিনহাজউদ্দিন আহমেদ (সাগর) ও আবদুল মালেক। স্থানীয়দের সঙ্গে যোগ হচ্ছে দুই বিদেশি রুশ গ্র্যান্ডমাস্টার সের্গেই ভলকভ ও ফারুক আমানাতো। ভলকভ রাশিয়ার সাবেক জাতীয় চ্যাম্পিয়ন। ভলকভের বর্তমান রেটিং ২৬২৮। ফারুকের রেটিং ২৬২৪। তাজিকিস্তানে জন্ম নেওয়া ফারুক অনেক দিন থেকেই রাশিয়ার হয়ে খেলছেন। আগামী ১ নভেম্বর ঢাকায় আসবেন এই দুই গ্র্যান্ডমাস্টার। তাঁদের নিয়ে দারুণ আশাবাদী নিয়াজ, ‘ওরা দুজনই খুব ভালো মানের দাবাড়ু। ওদের নিয়ে নতুন করে বলার কিছু নেই। স্থানীয়দের সঙ্গে এদের সমন্বয়ে গড়া দলটি খুবই ভালো হবে। আমরা হ্যাটট্রিক শিরোপা উপহার দিতে চাই মোহামেডানকে।’ গত বছরের জাতীয় চ্যাম্পিয়ন নিয়াজ এবার হয়েছেন পঞ্চম। তবে লিগে নিজেকে আবারও ছন্দেই দেখতে চান উপমহাদেশের প্রথম গ্র্যান্ডমাস্টার, ‘জাতীয় দাবায় খারাপ খেলেছি, কিন্তু লিগে আশা করি ভালোই খেলব।’গ্র্যান্ডমাস্টার রিফাত বিন সাত্তার, বর্তমান জাতীয় চ্যাম্পিয়ন গ্র্যান্ডমাস্টার আবদুল্লাহ আল রাকিব, গ্র্যান্ডমাস্টার এনামুল হোসেন (রাজীব) ও তৈয়বুর রহমানকে নিয়ে যথেষ্টই ভালো দল গড়ছে দুরন্ত রাজশাহী। বিদেশি খেলোয়াড় সংগ্রহে কম চেষ্টা করেনি তারা। চেষ্টা করেও কোনো রুশ দাবাড়ু না আনতে পেরে দুই ভারতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার সূর্যশেখর গাঙ্গুলী ও সন্দীপন চন্দকে আনার চেষ্টা করছে রাজশাহীর দলটি।ফরিদপুরের ভাঙ্গা উপজেলার চুমুরদী ইউনিয়নের পূর্ব সদরদী এলাকায় সড়ক দুর্ঘটনায় নির্মল পাল (৪৫) নামের এক ব্যক্তি নিহত হয়েছেন। গতকাল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে ভাঙ্গাগামী একটি অটোরিকশায় ওঠার সময় তাঁকে পেছন থেকে তিন চাকার মাহিন্দ্র ধাক্কা দিলে তিনি মাটিতে পড়ে যান। এ সময় পেছন থেকে একটি অজ্ঞাত বাস তাকে চাপা দিলে ঘটনাস্থলেই তিনি প্রাণ হারান। তিনি উপজেলার ঘারুয়া গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন।  ফরিদপুর অফিসফরিদপুর-৪ আসনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী কাজী জাফর উল্যাহর প্রতিদ্বন্দ্বী স্বতন্ত্র প্রার্থী মজিবুর রহমান ওরফে নিক্সন চৌধুরী বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে আত্মীয় মনে করেন না বলে যে বক্তব্য দিয়েছেন, সেটা তাঁর রাজনৈতিক বক্তব্য। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী আমাকে আত্মীয় মনে না করলেও আমি তাঁর আত্মীয়। কারণ, বঙ্গবন্ধুর বড় বোন (ফাতেমা বেগম) আমার দাদি।’গতকাল শনিবার বিকেলে ফরিদপুর জেলা প্রেসক্লাবে সাংবাদিকদের সঙ্গে মতবিনিময়কালে নিক্সন চৌধুরী এসব কথা বলেন।এর আগে গত বৃহস্পতিবার দুপুরে প্রধানমন্ত্রী ফরিদপুরের ভাঙ্গা চৌরাস্তাসংলগ্ন বালুর মাঠে নির্বাচনী জনসভায় বলেছিলেন, ‘পদ্মা সেতু নিয়ে যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে, যাদের দুদক জিজ্ঞাসাবাদ করেছে, তারা আমার আত্মীয় হতে পারে না।’পদ্মা সেতু কেলেঙ্কারির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ফুফাতো ভাইয়ের ছেলে নিক্সন চৌধুরীকে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জিজ্ঞাসাবাদ করেছিল। এ বিষয়ে নিক্সন চৌধুরী দাবি করেন, ‘পদ্মা সেতুর দুর্নীতিতে আমি জড়িত নই। দুদক কাউকে ডেকে জিজ্ঞাসাবাদ করলেই তিনি দুর্নীতিবাজ হয়ে যান না। তা ছাড়া এ-সংক্রান্ত মামলায় আমার নামও নেই।’নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ওই জনসভায় পদ্মা সেতুর দুর্নীতিতে আমি জড়িত—এ মর্মে কোনো বক্তব্য দেননি। তিনি হয়তো ওই বক্তব্য দিয়ে তাঁর আশপাশের কাউকে বোঝাতে চেয়েছেন।’জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেছিলেন, ‘পঁচাত্তরে খুনিদের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া আমি ও আমার বোন রেহানা, আমাদের সন্তান, নাতি-নাতনি ও জামাই ছাড়া আমার আর কোনো আত্মীয় নেই। এর বাইরে কেউ যদি আত্মীয় পরিচয় দেয়, আমি তা বরদাশত করব না।’ প্রধানমন্ত্রীর এই বক্তব্য প্রসঙ্গে নিক্সন চৌধুরী বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ওই কথায় তাঁর পরিবারের সদস্যদের বুঝিয়েছেন। পরিবারের সদস্য বলতে ছেলেমেয়ে, নাতি-নাতনিদেরই বোঝায়। আমি তো তাঁর পরিবারের সদস্য নই। আমি হলাম আত্মীয়।’কাদের মোল্ল্লার কবর জিয়ারত করা-সংক্রান্ত এক প্রশ্নের জবাবে নিক্সন চৌধুরী বলেন, তিনি ত্লাঁর কবর জিয়ারত করেননি। এটা গোপনে হয়তো কাজী জাফর উল্যাহ করতে পারেন। কেননা, তাঁর বাবা কাজী মাহবুব উল্ল্লাহ রচিত সেই যে আমার নানা রঙের দিনগুলি বইতে তিনি একাত্তরে পাকিস্তানি বাহিনীর সদস্যদের খাবার সরবরাহ করতেন মর্মে উল্ল্লেখ করেছেন।
মোটরবাইক ও স্পোর্টসকারের প্রতি দারুণ আকর্ষণ আছে টটেনহাম কোচ আন্দ্রে ভিলাস-বোয়াসের। মোটর রেসে অংশ নেওয়ার জন্য নিজের কোচিং ক্যারিয়ারটা আগেভাগে শেষ করে দেবেন বলেও ঘোষণা দিয়েছেন।বাল্যবিবাহ প্রতিরোধে কিশোরগঞ্জের নিকলী উপজেলার দামপাড়া কারার মাহতাব উদ্দিন উচ্চবিদ্যালয়ের মাঠে গতকাল সোমবার বেলা ১১টার দিকে এক ঘণ্টা মানববন্ধন হয়েছে। মানববন্ধন শেষে বিদ্যালয়ের মাঠে এক সমাবেশ হয়। এতে বাল্যবিবাহের কুফল সম্পর্কে বক্তব্য দেন ব্র্যাক সামাজিক ক্ষমতায়ন কর্মসূচির জেলা ব্যবস্থাপক আজাদ রহমান, উপজেলা একাডেমি সুপারভাইজার মো. শাহজাহান, বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেলোয়ার হোসেন প্রমুখ। ১ অক্টোবর প্রথম আলোয় ‘বিদ্যালয়টির ১৮ ছাত্রীর বিয়ে হলো দুই মাসে, আরেক বিদ্যালয়ে তিন মাসে ১৪ ছাত্রীর বিয়ে’ শিরোনামে একটি সংবাদ প্রকাশিত হয়।  নিকলী (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধিবিএনপিসহ ১৮-দলীয় জোটের ডাকা অবরোধ চলাকালে গত মঙ্গলবার দিবাগত রাত থেকে গতকাল বুধবার রাত নয়টা পর্যন্ত সারা দেশে সহিংসতায় ছয়জন নিহত হয়েছেন।এর মধ্যে সংঘর্ষে সিরাজগঞ্জে ছাত্রদলের এক নেতা ও জামায়াতের এক কর্মী, সাতক্ষীরায় জামায়াতের এক কর্মী, গাজীপুরে ছাত্রলীগের সাবেক নেতা ও ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য রয়েছেন।চট্টগ্রামের পটিয়া উপজেলায় গতকাল অবরোধকারীদের মারধরের সময় টেম্পো উল্টে একজন চালক মারা গেছেন। সাতক্ষীরার কলারোয়ায় সড়ক অবরোধের কাটা গাছে চাপা পড়ে এক নারীর মৃত্যু হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শী ও পুলিশের বরাত দিয়ে খবর জানাচ্ছেন আমাদের নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিরা:সিরাজগঞ্জ: বেলা ১১টার দিকে বেলকুচি পৌর শহরের মুকুন্দগাতী বাজারে জামায়াত-শিবির ও বিএনপির মিছিলে বাধা দিলে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষ বাধে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে যোগ দেন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা। প্রায় দুই ঘণ্টাব্যাপী সংষর্ঘে শতাধিক ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান অবরোধকারীরা। পুলিশ ও র‌্যাব দুই শতাধিক রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে। এতে গুলিবিদ্ধ হয়ে কল্যাণপুর গ্রামের জামায়াতের কর্মী আবদুল জলিল (৫৫) ঘটনাস্থলেই নিহত হন।অপর গুলিবিদ্ধ ধুকুরিয়া বেড়া ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের যুগ্ম সম্পাদক ও মেটুয়ানী গ্রামের বাসিন্দা মাসুম বিল্লাহকে (২২) হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান।এ সংঘর্ষে পুলিশের চার সদস্যসহ আওয়ামী লীগ, বিএনপি ও জামায়াতের কমপক্ষে ৪০ জন আহত হন।উপজেলা জামায়াতের সেক্রেটারি আরিফুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের শান্তিপূর্ণ অবরোধ কর্মসূচিতে পুলিশ ও আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা অতর্কিত হামলা চালান। এরপর পুলিশের গুলিতে আমাদের দুজন নিহত এবং ২০ জনের মতো আহত হন।’উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ফজলুল হক জানান, জামায়াত ও বিএনপির নেতা-কর্মীরা গতকাল উপজেলা সদরে তাণ্ডব চালানোর জন্য একত্রিত হয়েছিলেন। তাঁদের হামলায় আওয়ামী লীগের ২০ জন আহত হয়েছেন।বেলকুচি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবদুল হাই বলেন, মূলত আওয়ামী লীগের সঙ্গে জামায়াত-বিএনপির সংঘর্ষ শুরু হয়। উভয় পক্ষই গোলাগুলি করেছে। নিজেদের ছোড়া গুলিতে জামায়াত-বিএনপির দুজন মারা গেছেন।সাতক্ষীরা: সদর থানার ওসি ইনামুল হক জানান, আসামি ধরতে মঙ্গলবার দিবাগত রাত দুইটার দিকে পুলিশ, র‌্যাব ও বিজিবির ৩৫০ জনের দল সদর উপজেলার আগরদাড়ি গ্রামের উদ্দেশে রওনা হয়। খবর পেয়ে এর আগেই জামায়াত-শিবিরের হাজার তিনেক কর্মী-সমর্থক আবাদের হাটে জড়ো হয়ে যৌথ বাহিনীর ওপর অনবরত ককটেল, পটকা ও ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করেন। যৌথ বাহিনী ফিরে আসার চেষ্টা করলে তাঁরা বিভিন্ন স্থানে গাছ কেটে অবরোধ করেন। পুলিশ বাধ্য হয়ে শটগানের ৩৪০টি গুলি, চায়নিজ রাইফেলের ১৬টি ও এসএমজির সাতটি গুলি এবং কাঁদানে গ্যাসের চারটি শেল ছোড়ে। এতে শামছুর রহমান (৩৫) নামের জামায়াতের এক কর্মী নিহত হন।শামছুর রহমান সদর উপজেলার শিয়ালডাঙ্গা গ্রামের আবদুল মাজেদের ছেলে।আগরদাড়ি গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা জানান, রাত সাড়ে তিনটার দিকে পুলিশ ফিরে যাওয়ার খবরে আগরদাড়ি বাজারে আওয়ামী লীগের সমর্থক তিনজনের দোকানে লুটপাট চালায় জামায়াত-শিবির। আগরদাড়ি ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক তাপস আচার্য ও সদর উপজেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি গোপাল ঘোষালের বাড়িতে ভাঙচুর, লুটপাট ও অগ্নিসংযোগ করে তারা।জেলা জামায়াতের আমির মাওলানা আবদুল খালেক মণ্ডল জানান, পুলিশের গুলিতে শামছুর রহমান নিহত হওয়ার ঘটনায় ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী কয়েকটি দোকানপাট ও বাড়ি ভাঙচুর করে।মঙ্গলবার কলারোয়া উপজেলার যুগীপুকুর এলাকায় সাতক্ষীরা-যশোর সড়কে গাছ কেটে অবরোধ করা হয়। গতকাল ওই গাছ সরানোর সময় অর্ধেক ঝুলে থাকা একটি ডাল মাথায় পড়ে আম্বিয়া খাতুন (২৮) নামের এক নারীর মৃত্যু হয়।কলারোয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহ দারা খান বলেন, আম্বিয়া গোপীনাথপুর গ্রামের হারুন-অর-রশিদের স্ত্রী।পটিয়া (চট্টগ্রাম): পটিয়ায় নিহত টেম্পোচালক এরশাদ আলীর (২২) ভাগনে তৈয়ব আলী জানান, সকালে টেম্পো নিয়ে বের হন এরশাদ। আটটার দিকে ফকিরনির হাটে দুই অবরোধকারী এরশাদের দুপাশে উঠে চলন্ত অবস্থায় মারধর করতে থাকেন। একপর্যায়ে টেম্পোটি নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে উল্টে যায়। এতে গুরুতর আহত হন এরশাদ।পরে লোকজন এরশাদকে উদ্ধার করে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাঁর মৃত্যু হয় বলে জানান হাসপাতাল পুলিশ ফাঁড়ির উপপরিদর্শক জহিরুল ইসলাম।গাজীপুর: কালীগঞ্জ উপজেলার চুপাইর বাজারে গতকাল বেলা দেড়টার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা রামদা, লাঠি নিয়ে পুরোনো টায়ার ও আবর্জনায় আগুন দিয়ে বিক্ষোভ করেন।এ সময় আওয়ামী লীগের একটি অবরোধবিরোধী মিছিল এলে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। এতে লাঠির আঘাতে জামালপুর ইউপির সদস্য এবং ওই ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি কামাল হোসেনসহ (৩০) ১০-১২ জন গুরুতর আহত হন। আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে কালীগঞ্জ সদর হাসপাতালে নেওয়ার পথে কামালের মৃত্যু হয়।থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গণি ভূঁইয়া বলেন, ‘আমাদের নেতা-কর্মীরা বিরোধী দলের নৈরাজ্য বন্ধের প্রতিবাদ করতে গেলে তাঁরা হামলা চালান।’শনিবার বেলা পৌনে একটা। বগুড়া রেলস্টেশনে ট্রেনের জন্য অপেক্ষা করছিলেন গাইবান্ধার সাঘাটা উপজেলার ৬৫ বছরের অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আবদুল জলিল। মেয়ের অসুস্থতার খবর পেয়ে তিনি ঢাকায় যাওয়ার উদ্দেশে বগুড়ায় এসেছিলেন। কিন্তু সাঘাটা থেকে রিকশাভ্যান, অটোরিকশায় বগুড়া পর্যন্ত আসতে পারলেও তিনি ঢাকায় যেতে পারেননি। ঘণ্টার পর ঘণ্টা বগুড়ার বাস টার্মিনাল ও রেলস্টেশনে ছোটাছুটি করে ঢাকায় যাওয়ার কোনো টিকিট জোগাড় করতে পারেননি।আবদুল জলিল রেলওয়ে বগুড়ার স্টেশনমাস্টার নজরুল ইসলামকে প্রশ্ন করেন, ‘আজক্যা কোন দলের হরতাল নাগচে বাহে? সগলি কচ্চে সরকারি দল হরতাল দিবার নাগচে?’নজরুল ইসলাম জানান, গত শুক্রবার রাত থেকে ঢাকাগামী শত শত যাত্রী স্টেশনে ভিড় করছেন। কিন্তু ট্রেন নেই। সর্বশেষ শুক্রবার রাত ১০টার দিকে ‘রংপুর এক্সপ্রেস’ ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে গেলেও টাঙ্গাইল থেকে ট্রেনটি ফিরে এসেছে। ঘন কুয়াশা ও ট্রেনের নিরাপত্তাজনিত কারণে গতকাল শনিবারের ঢাকামুখী সব ট্রেনের শিডিউল বাতিল করা হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রেলস্টেশনে অপেক্ষমাণ শত শত যাত্রীর মতোই দুর্ভোগের একই চিত্র দূরপাল্লার বাস টার্মিনালেও। সেখানেও ঢাকাগামী যাত্রীদের প্রচণ্ড ভিড়। কিন্তু বাস কাউন্টারগুলোতে তালা ঝুলছে। শহরের মালতীনগরের বাসিন্দা আবদুল জোব্বার বলেন, ‘ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অসুস্থ এক আত্মীয়কে ভর্তি করিয়েছি। তাঁর কাছে ওষুধ কেনার টাকা নেই। টাকা নিয়ে শনিবার সেখানে পৌঁছানোর কথা ছিল। কিন্তু বাস পাচ্ছি না।’টিআর ট্রাভেলসের ব্যবস্থাপক আবদুল মান্নান জানান, বিএনপির কর্মসূচিকে ঘিরে যানবাহনে নাশকতার আশঙ্কায় বাস চলাচল বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে।বগুড়া মোটর মালিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম জানান, পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকলে রোববার দুপুরের পর থেকে গাড়ি ছাড়ার কথা রয়েছে।
‘ধর্ম যার যার, দেশ সবার’ এই স্লোগান নিয়ে পঞ্চগড়ে হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের ত্রিবার্ষিক সমেঞ্চলন অনুষ্ঠিত হয়।গতকাল শুক্রবার দুপুরে পঞ্চগড় সরকারি মিলনয়াতনে অনুষ্ঠিত সমেঞ্চলনে পরিষদের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য নিম চন্দ্র ভৌমিক প্রধান অতিথি ও পঞ্চগড়-১ আসনের সাংসদ মো. মজাহারুল হক প্রধান বিশেষ অতিথি ছিলেন।সমেঞ্চলন আয়োজক কমিটির আহ্বায়ক মহানন্দ রায়ের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ইন্দ্র মোহন রায়, সুব্রত চৌধুরী, গণেশ ঘোষ, দেবীগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আবদুল মালেক চিশতি, পঞ্চগড় পূজা উদ্যাপন কমিটির সভাপতি অর্জুন ভৌমিক, সুবাস চন্দ্র রায় প্রমুখ বক্তৃতা করেন।বক্তারা দেশে সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষায় আগামীতে আওয়ামী লীগের সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হাতকে আরও শক্তিশালী করার আহ্বান জানান।১৯৩০ সালে প্রথম বিশ্বকাপে খেলেছিল ১৩টি দল। ক্রমান্বয়ে সেটি বেড়ে ১৯৯৮ বিশ্বকাপ থেকে সংখ্যাটা দাঁড়িয়েছে ৩২। ২০১৮ রাশিয়া বিশ্বকাপে সংখ্যাটা আরও বাড়তে পারে। ফিফা সভাপতি সেপ ব্ল্যাটার সম্প্রতি এমনই ইঙ্গিত দিয়েছেন। বলেছেন, বিশ্বকাপে দলের সংখ্যা বাড়ানো উচিত। বিশেষ করে আফ্রিকা ও এশিয়া থেকে। তার তিন দিন পর ব্ল্যাটারের সঙ্গে সুর মিলিয়ে মিশেল প্লাতিনি বললেন, বিশ্বকাপে দল হওয়া উচিত ৪০টি!চতুর্থবারের মতো ফিফা সভাপতি নির্বাচিত হওয়া ব্ল্যাটারের মেয়াদ শেষ হবে ২০১৫ সালে। ফিফার শীর্ষ পদটিতে ৭৭ বছর বয়সী ব্ল্যাটারের সম্ভাব্য উত্তরসূরি ভাবা হচ্ছে প্লাতিনিকে। ইউরোপিয়ান ফুটবলের (উয়েফা) বড় কর্তা নিজেও সেই ইচ্ছার কথা অনেকবারই ব্যক্ত করেছেন। সেই আলোকেই কিনা, উয়েফা সভাপতিও আফ্রিকা-এশিয়া থেকে দলের সংখ্যা বাড়ানোর কথাই বললেন। তবে ইউরোপ থেকে দল না কমানোর পক্ষে ফরাসি কিংবদন্তি। বর্তমান ছকে ৩২ দলের ১৩টিই সুযোগ পায় ইউরোপ থেকে। আফ্রিকা থেকে ৫টি। এশিয়া ও দক্ষিণ আমেরিকা অঞ্চল থেকে ৯টি। শেষোক্ত দুই মহাদেশ থেকেই বাছাইপর্বের শীর্ষ ৪টি করে দল সরাসরি বিশ্বকাপে খেলার সুযোগ পায়। দুই অঞ্চলের পঞ্চম হওয়া দল দুটি মুখোমুখি হয় প্লে-অফে। অথচ ইউরোপের চেয়ে আফ্রিকা ও এশিয়ায় ফিফার সদস্যসংখ্যা বেশি।৪০ দলের বিশ্বকাপ হলে কেমন হবে? প্রাথমিক একটা ধারণাও দিয়েছেন প্লাতিনি, ‘এটা সবার জন্যই ভালো হবে। আমি মি. ব্ল্যাটারের সঙ্গে পুরোপুরি একমত, আমাদের আরও বেশি আফ্রিকা ও এশিয়ার প্রতিনিধি দরকার। ইউরোপিয়ান দল না কমিয়েও আমাদের ৪০ দলের বিশ্বকাপ করতে হবে। আমরা আফ্রিকা থেকে দুটি, এশিয়া থেকে দুটি, আমেরিকা থেকে দুটি এবং ওশেনিয়া ও ইউরোপ থেকে একটি করে দল বাড়াতে পারি।’প্রসঙ্গত এ পর্যন্ত হওয়া ১৯টি বিশ্বকাপের সবগুলো শিরোপাই জিতেছে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার দেশগুলো। রয়টার্স।বিএনপি নেতৃত্বাধীন ১৮ দলীয় জোট নির্বাচনে না এলে কাগজে-কলমে আওয়ামী লীগের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী দল হবে জাতীয় পার্টি (জাপা)। তবে জোটবিহীন নির্বাচনে শেষ পর্যন্ত জাপা ছাপিয়ে আওয়ামী লীগ দলীয় প্রার্থীদের লড়াইয়ে নামতে হতে পারে দলের বিদ্রোহী প্রার্থীদের সঙ্গে।নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহ বাড়াতে এবং ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে আওয়ামী লীগের নীতিনির্ধারক মহল থেকে এমন কৌশল নেওয়া হতে পারে বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। তখন দলের বিদ্রোহীদের ব্যাপারে কোনো হস্তক্ষেপ করা হবে না বলেও শোনা যাচ্ছে।জানা গেছে, ইতিমধ্যে আওয়ামী লীগ দলীয় মনোনয়নপত্র বিতরণ শেষ করেছে। নগরের প্রতিটি আসন থেকে দলের মনোনয়নপ্রত্যাশী একাধিক ব্যক্তি মনোনয়নপত্র নিয়েছেন। চূড়ান্ত মনোনয়ন দেবেন দলীয় প্রধান শেখ হাসিনা। চূড়ান্ত মনোনয়নের পর দলের বাইরে গিয়ে একাধিক নেতার প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে।দলের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন নেতা বলেন, ‘যদি বিএনপি না আসে, তাহলে ভোটার উপস্থিতি বাড়াতে দলীয় প্রার্থীর বাইরে শক্তিশালী কোনো নেতাকে বিদ্রোহী হিসেবে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হতে পারে। সেভাবেই হিসাব-নিকাশ চলছে।’ তবে দলীয় নেতারা মুখে এখনো বলছেন দলের সিদ্ধান্তের বাইরে কেউ যাবেন না।অতীত অভিজ্ঞতা থেকে নেতারা মনে করছেন, জাতীয় পার্টির প্রার্থী চট্টগ্রাম নগরে শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতা গড়তে পারবেন না। তাই এমন কৌশল নেওয়া হতে পারে।সূত্র মতে, চট্টগ্রাম-১০ (ডবলমুরিং) আসনে গতবার আফছারুল আমীন দলের বিদ্রোহী প্রার্থী হিসেবে লড়াই করে জিতেছিলেন। ওই আসনে তখন মহাজোটের প্রার্থী ছিলেন জাতীয় পার্টির মোরশেদ মুরাদ ইব্রাহিম। কিন্তু তিনি হয়েছিলেন তৃতীয়।এ আসনে সদ্য সাবেক মন্ত্রী আফছারুল আমীনের পাশাপাশি মনোনয়ন দৌড়ে রয়েছেন যুবলীগের আহবায়ক মহিউদ্দিন ওরফে বাচ্চু, এম এ আজিজের ছেলে সাইফুদ্দিন খালেদ, নগর আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা এ কে এম বেলায়েত হোসেন ও ওয়ার্ড কাউন্সিলর রেহেনা বেগম। দলীয় মনোনয়নের বাইরে এঁদের যে কেউ স্বতন্ত্র হিসেবে নির্বাচন করতে পারেন বলে জানা গেছে।জানতে চাইলে যুবলীগের মহিউদ্দিন বলেন, ‘দলের মনোনয়ন চেয়েছি। দেখা যাক কাকে দেয়।’চট্টগ্রাম-৯ (কোতোয়ালি) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন সাংসদ নুরুল ইসলাম। তিনি দুই-এক দিনের মধ্যে নির্বাচন কমিশন থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করবেন বলে প্রথম আলোকে জানিয়েছেন।একই আসন থেকে দলের নগর কমিটির অপর সহসভাপতি ইব্রাহিম হোসেন চৌধুরী, সহসভাপতি জহিরুল আলম দোভাষ, সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিনও দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। তিন প্রার্থীরই গ্রহণযোগ্যতা রয়েছে। শেষ পর্যন্ত দলীয় মনোনয়ন না পেলে কেউ বিদ্রোহী হিসেবে দাঁড়িয়ে যেতে পারেন। জানতে চাইলে নুরুল ইসলাম বলেন, ‘এটি দলের সিদ্ধান্ত কি না জানি না। বিদ্রোহী প্রার্থী বিষয়ে আমি কিছু জানি না।’ তিনি আরও বলেন, ‘মনোনয়ন চাওয়ার অধিকার সবার আছে। সিদ্ধান্ত দেবেন নেত্রী। যদি মনোনয়ন না পাই, তাহলে আমি দলের বাইরে গিয়ে নির্বাচন করব না।’চট্টগ্রাম-১১ (পতেঙ্গা) আসন থেকে বর্তমান সাংসদ এম এ লতিফের শক্ত প্রতিদ্বন্দ্বী হয়ে যেতে পারেন নগর আওয়ামী লীগের দুই সহসভাপতি আলতাফ হোসেন অথবা খোরশেদ আলম। তিনজনই দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন। খোরশেদ আলম ইতিমধ্যে বিভিন্ন স্থানে হরতাল ও অবরোধবিরোধী মিছিল সমাবেশে সক্রিয় রয়েছেন।জানতে চাইলে খোরশেদ আলম বলেন, ‘মনোনয়নপত্র সংগ্রহ করব। তারপর দেখা যাক দল কাকে মনোনয়ন দেয়।’এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, বিএনপি না এলেও নির্বাচনে ভোটারের অভাব হবে না। বিএনপি না এলে জাতীয় পার্টি, নয়তো অন্য কোনো প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বী হবেন।অন্যদিকে চট্টগ্রাম-৮ (বোয়ালখালী-চান্দগাঁও) থেকে ১৪ দলের হয়ে ইতিমধ্যে রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে মনোনয়ন সংগ্রহ করেছেন জাসদের মঈন উদ্দীন খান বাদল। একই আসন থেকে আওয়ামী লীগের হয়ে মনোনয়ন চাইতে পারেন নগর কমিটির কোষাধ্যক্ষ বর্তমানে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান আবদুচ ছালাম। জানতে চাইলে আবদুচ ছালাম বলেন, ‘যদি নেত্রী নির্দেশ দেন তুমি নির্বাচন করো, তাহলে করব। এ জন্য আমার কর্মী, নেতা সব রেডি। কিন্তু যদি বলেন তুমি কোরো না, তাহলে করব না।’ এ আসন থেকে নগর আওয়ামী লীগের যুগ্ম সম্পাদক রেজাউল করিমও মনোনয়ন চেয়েছেন।চলমান রাজনৈতিক অস্থিরতা, অবরোধ ও হরতালের কবল থেকে কৃষক ও কৃষিপণ্যকে বাঁচাতে এবার কৃষকেরা পাল্টা কর্মসূচি হিসেবে রাস্তা অবরোধ ও ফসল উত্পাদন বন্ধ করে দেবেন বলে হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন।গত শুক্রবার সন্ধ্যায় পাবনার ঈশ্বরদী প্রেসক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে কৃষকেরা এই হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করেন। বাংলাদেশ কৃষক উন্নয়ন সমিতির ব্যানারে অনুষ্ঠিত সংবাদ সম্মেলনে কৃষক, কৃষি ও দেশকে বাঁচাতে তাঁরা তিন দফা দাবি ঘোষণা করেন। তিন দফা দাবির মধ্যে রয়েছে: রাজনৈতিক দলগুলোকে কৃষিপণ্যবাহী গাড়ি অবরোধ ও হরতালের আওতামুক্ত রাখার ঘোষণা দেওয়া, ব্যাংক ও এনজিও থেকে নেওয়া কৃষকদের ঋণের সুদ মওকুফ ও মূল ঋণ পরিশোধের সময়সীমা বাড়ানো এবং সারের উচ্চমূল্য নিয়ন্ত্রণ করা।
ম্যাচ শেষ হতেই মাঠে বিশ্বকাপ জয়ের উল্লাস। এরপর নিজেদের তাঁবুতে গলা ফাটিয়ে গান-বাজনা, স্লোগানে স্লোগানে মুখর চারপাশ। মাঠের অধিনায়ক উৎপল শুভ্র হলেও গান-স্লোগান পর্বের নেতা একই সঙ্গে গায়ক, সাংবাদিক ও ক্রিকেটার সাজেদ ফাতেমি। পুরস্কার বিতরণী মঞ্চে উৎপল শুভ্রর প্রতিক্রিয়া তুলল হাসির হুল্লোড়। ম্যাচ জিতে এবং হাসি-গান-নাচ-আনন্দে বিএসজেএ মিডিয়া কাপ থেকে বিদায় নিল প্রথম আলো। টুর্নামেন্টের মূল সুরটা সবচেয়ে বেশি ধরতে পেরেছে যেন প্রথম আলোই। নিজেরা যেমন উপভোগ করেছে, তেমনি মাঠের ভেতরে-বাইরে বিনোদন জুগিয়েছে সবাইকে।প্রথম ম্যাচের মতো কাল গ্রুপের শেষ ম্যাচেও প্রথম আলোর জয়টা এসেছে অনায়াসে। ‘কারওয়ান বাজার ডার্বি’ তকমা পাওয়া ম্যাচে দৈনিক ইত্তেফাকের বিপক্ষে জিতেছে কোনো উইকেট না হারিয়েই। ৭১ রান তাড়া করে ফেলেছে ৪.১ ওভারেই। শেষ পর্যন্ত উইকেটে থেকে দলের জয় সঙ্গী করে ফেরার প্রতিজ্ঞায় কাল ওপেন করা অধিনায়ক উৎপল শুভ্র প্রতিজ্ঞা পূরণ করেছেন অপরাজিত ১০ রানে। আরেক ওপেনার ফয়সাল আজিম করেছেন অপরাজিত ২৫। ফয়সাল ও শুভ্র এর আগে বল হাতেও নিয়েছেন একটি করে উইকেট। ম্যাচের প্রথম বলেই উইকেট পেয়েছেন তারেক মাহমুদ। উইকেট না পেলেও কিপটে বোলিংয়ে ব্যাটসম্যানদের বেঁধে রেখেছিলেন আরিফুল, রিয়াজ ও শামীম। ম্যাচসেরা হয়েছেন ফয়সাল।আজকের কোয়ার্টার ফাইনালের আট দল ডেইলি স্টার, চ্যানেল নাইন, জিটিভি, কালের কণ্ঠ, রেডিও টুডে, সমকাল, রাইজিংবিডি.কম ও মাছরাঙা।সংলাপ চাইলে এখন প্রধান বিরোধী দল বিএনপিকেই উদ্যোগ নিতে হবে বলে জানিয়েছে আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন ১৪-দলীয় জোট।গতকাল সোমবার আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে ১৪ দলের বৈঠক শেষে সংবাদ ব্রিফিংয়ে এসব কথা জানানো হয়।সংবাদ ব্রিফিং করেন ১৪ দলের মুখপাত্র ও আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মো. নাসিম। তিনি বলেন, ‘আমরা সংলাপ চাই। প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকতা দেখিয়েছেন। এখন বিরোধী দল সাড়া দিয়ে এগিয়ে এলে সংলাপ শুরু হবে। ১৪ দল মনে করে, দ্রুত এই সংলাপ শেষ করা দরকার। আমরা অপেক্ষা করছি বিরোধী দল আসবে ও বসবে।’বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন এমন কয়েকজন নেতা জানান, ১৪ দল সংলাপ চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মত দিয়েছে। তবে সংলাপের জন্য সময় বেশি ব্যয় হলে নির্বাচনী প্রস্তুতি বাধাগ্রস্ত হবে মনে করে তা দ্রুত শেষ করার তাগিদ দেওয়া হয়।২৯ অক্টোবরের পর বিএনপি সংলাপে বসতে চাইলে ১৪ দল রাজি হবে কি না—সংবাদ ব্রিফিংয়ে এমন প্রশ্নের জবাবে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টির সভাপতি রাশেদ খান মেনন বলেন, ‘আমরা সব সময়ই রাজি। তবে উদ্যোগটা বিরোধী দলকে নিতে হবে। সাড়া দেওয়ার দায়িত্ব বিরোধী দলের। ওনারা বলুন, কীভাবে আলোচনা করবেন।’নাসিম জানান, ১৪ দলের সভায় বিরোধী দলের ডাকা হরতালে বোমাবাজি ও নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ১ নভেম্বর ঢাকাসহ সারা দেশে সভা-সমাবেশ এবং পৃথকভাবে পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত হয়। বিএনপি-জামায়াতের বিরুদ্ধে পাল্টা অবস্থান না নিলে দেশ পিছিয়ে যাবে, তা বোঝানোর জন্য পেশাজীবীদের সঙ্গে মতবিনিময় করা হবে।বিএনপি-জামায়াত বিরোধী প্রচারপত্র: এ ছাড়া বিএনপি ও জামায়াতকে বর্জন এবং মুক্তিযুদ্ধের স্বপক্ষের শক্তির পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান জানিয়ে একটি প্রচারপত্র তৈরির সিদ্ধান্ত হয়। এটা করার জন্য ওয়ার্কার্স পার্টির নেতা ফজলে হোসেন বাদশা, আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক খালিদ মাহমুদ চৌধুরী ও উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস ও জাসদের নাজমুল হক প্রধানকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। আজ মঙ্গলবারের মধ্যেই প্রচারপত্র চূড়ান্ত করার কথা রয়েছে।সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ুয়ার সভাপতিত্বে সংবাদ সম্মেলনে রাশেদ খান মেনন, মো. নাসিম ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন আওয়ামী লীগের মাহবুব উল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, ওয়ার্কার্স পার্টির সাংসদ ফজলে হোসেন বাদশাহ, জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের শরিফ নুরুল আম্বিয়া প্রমুখ।সবকিছুই ঠিকঠাক চলছিল মোহাম্মদ মানিকের (৩৮)। বাসের চালকের সহকারী থেকে চালকের আসনেও বসেছিলেন। সংসারও পেতেছিলেন ভালোবেসে বিয়ে করে। কিন্তু সুখ স্থায়ী হলো না তাঁর। হেরোইনের মরণনেশার কারণে ছাড়তে হলো পেশা। নেশার টাকা জোগাড় করতে গিয়ে শুরু করেন গাঁজা বিক্রি। কেবল তা-ই নয়, স্ত্রীকেও যুক্ত করেন এই কাজে।গাঁজা বিক্রি করে যা আয় হয় তা দিয়ে মানিক নেশা করেন। সংসার চলে না বলে একমাত্র ছেলেকে এতিম পরিচয় দিয়ে ভর্তি করিয়েছেন মাদ্রাসায়। গত সোমবার রাতে নগরের কোতোয়ালি এলাকার তুলাতুলি থেকে গাঁজাসহ এই দম্পতি গ্রেপ্তার হওয়ার পর পুলিশের জিজ্ঞাসাবাদে এসব তথ্য জানান।দৈনিক দুই বেলা ৮০০ টাকার হেরোইন লাগে মানিকের। তিনি বলেন, ‘ভাত না খেলেও চলে। হেরোইন ছাড়া চলে না।’সিনেমা দেখতে গিয়ে পরিচয় হওয়া আকলিমাকে ভালোবেসে বিয়ে করেন মানিক। ১৯ বছর আগে সিনেমার কাহিনির মতো দাম্পত্যজীবন শুরু হলেও নেশার আগুনে পুড়ে ছারখার হলো সব। স্ত্রী আকলিমার অভিযোগ, তাঁর সুখের সংসার নষ্ট হলো হেরোইনের কারণে।পুলিশকে মানিক ও তাঁর স্ত্রী জানান, এক ছেলে ও এক মেয়ে নিয়ে ছোট সংসার তাঁদের। গাঁজা বিক্রি করে দৈনিক হাজার টাকার মতো আয় হলেও ৮০০ টাকা খরচ হতো মানিকের নেশার পেছনে। বাকি ২০০ টাকায় সংসার চলে না বলে ছেলে শাকিলকে একটি মাদ্রাসায় ভর্তি করিয়ে দেন তাঁরা।নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার মো. বাবুল আক্তার প্রথম আলোকে বলেন, ‘নেশার টাকা জোগাড় করতে আরেকটি নেশার উপাদান বিক্রি করছিলেন তাঁরা। স্বামীর নেশার কারণে মূল্য দিতে হলো স্ত্রী ও সন্তানদের। নেশায় আসক্ত না হলে সুখের সংসার হতো তাঁদের।’জানতে চাইলে গত মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মহানগর হাজতখানায় মোহাম্মদ মানিক বলেন, ‘গাঁজা বিক্রি করে লাভ বেশি হয়। তাই নেশার টাকা জোগাড় করতে গাঁজা বিক্রি করি। হেরোইন না খেলে থাকতে পারি না।’বাবুল আক্তার জানান, সাত টাকায় ছোট এক পুরিয়া গাঁজা কিনে ১০ টাকায়, ৩৫ টাকায় বড় পুরিয়া কিনে ৫০ টাকায় বিক্রি করতেন তাঁরা। দৈনিক ৮০ থেকে ৯০ জন লোক তাঁদের কাছ থেকে গাঁজা কিনতেন।মানিকের বাড়ি মুন্সিগঞ্জ জেলায়। নদীর ভাঙনে ঘরবাড়ি বিলীন হয়ে গেলে চট্টগ্রাম চলে আসেন ২৫ বছর আগে। বাসের চালকের সহকারী হিসেবে শুরু তাঁর পেশাগত জীবন। এরপর গাড়ি চালানো শিখে চালকও হয়েছিলেন। নিজের চেষ্টা ও পরিশ্রমের মাধ্যমে উঠে দাঁড়িয়েছিলেন মানিক। কিন্তু সর্বনাশা নেশা সবকিছুই কেড়ে নিল তাঁর।বিরোধী দলের গণতন্ত্রের অভিযাত্রা কর্মসূচিতে বাধা না দিয়ে তা সম্পন্ন করতে সহযোগিতার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিকল্পধারার সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী। গতকাল শনিবার এক বিবৃতিতে তিনি এ আহ্বান জানান।সাবেক রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘বিকল্পধারার পক্ষ থেকে সরকারকে অনুরোধ করতে চাই, তারা যেন বড় একটি রাজনৈতিক কর্মসূচি বিনা বাধায় সম্পন্ন করতে গণতান্ত্রিক সরকারের ভূমিকা পালন করে। একইভাবে বিরোধীদলীয় নেত্রীর প্রতি আহ্বান, এ কর্মসূচি যেন কোনোক্রমেই সহিংস না হয়। যতক্ষণ পর্যন্ত কর্মসূচি অহিংস থাকবে, ততক্ষণ বিএনপির গণতান্ত্রিক ঢাকা অভিযাত্রাকে নীতিগতভাবে সমর্থন দেব।’জাতীয় পার্টির সংহতি সমাবেশ: অভিযাত্রা কর্মসূচির সমর্থনে কাজী জাফর আহমদের নেতৃত্বাধীন জাতীয় পার্টি সকাল ১০টায় জাতীয় প্রেসক্লাবে সংহতি সমাবেশ করবে।
কুড়িগ্রাম ও লালমনিরহাট জেলার ২০০ শিশু লোকসংগীতশিল্পীকে শিক্ষাবৃত্তি দেওয়া হয়েছে। লালমনিরহাটের লোকসংগীতচর্চা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান আরশী নগরের উদ্যোগে লালমনিরহাট জেলা পরিষদ মিলনায়তনে গতকাল শুক্রবার সকাল সাড়ে ১০টায় এ বৃত্তি প্রদান অনুষ্ঠান হয়।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ‘খুঁজি শিকড়ের গান, মঞ্চালোকে শুদ্ধ হোক শত-সহস্র প্রাণ’ স্লোগান সামনে রেখে এ অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। আরশী নগরের সভাপতি নীল কমল মিশ্রের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সভায় প্রধান অতিথি ছিলেন জেলা প্রশাসক মো. হাবিবুর রহমান।বিশেষ অতিথি ছিলেন জেলা পুলিশ সুপার হাবিবুর রহমান ও ক্যাপ্টেন (অব.) আজিজুল হক বীর প্রতীক। এতে স্বাগত বক্তব্য দেন সংগঠনের নির্বাহী পরিচালক বাদশা আলম।অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন রেহানা খাতুন, কামনা রাণী রায়, বিজয় রায়, বলরাম গোস্বামী প্রমুখ। অনুষ্ঠানে শিক্ষাবৃত্তি পাওয়া প্রত্যেক শিশুশিল্পীকে এক হাজার টাকা করে দেওয়া হয়।এই মুহূর্তে বিশ্বের সেরা স্ট্রাইকার কে? মনে মনে কি লিওনেল মেসি বা ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর কথা ভাবছেন? তা আপনি ভাবতেই পারেন, কিন্তু আর্সেন ওয়েঙ্গার বা পেপ গার্দিওলাকে জিজ্ঞেস করুন। তাঁদের কাছে অন্য রকম উত্তর পাবেন!আগে গার্দিওলার কথাটাই শোনা যাক। বায়ার্ন মিউনিখ কোচ বেছে নিয়েছেন নিজের দলের স্ট্রাইকার মারিও মানজুকিচকে। হার্থা বার্লিনের সঙ্গে এই সপ্তাহেই জোড়া গোল করেছেন এই ক্রোট স্ট্রাইকার। এই মৌসুমে বুন্দেসলিগায় তাঁর গোলও হয়ে গেছে সাতটি। কিন্তু জার্মানিতেই ৭ গোল আছে আরও তিনজনের। ইউরোপে আরও কয়েকজন এর চেয়েও বেশি গোল পেয়ে গেছেন। তাহলে মানজুকিচ কেন? গার্দিওলার উত্তর, ‘ পেনাল্টি বক্সের ভেতরে সে হেড থেকে যেভাবে গোল করছে, তাতে মানজুকিচই এই মুহূর্তের বিশ্বের সেরা ফরোয়ার্ড।’তুলনায় আর্সেন ওয়েঙ্গারের মত অনেকটা নিরপেক্ষ। নিজের দলের কেউ নন, আর্সেনাল কোচ বিশ্বসেরা বলছেন জ্লাতান ইব্রাহিমোভিচকে, ‘জ্লাতান কি মেসি ও রোনালদোর চেয়ে ভালো? এই মুহূর্তে অন্তত আমার সেটাই মনে হয়। ৩২ বছর বয়সে কীভাবে নিজের প্রতিভা কাজে লাগাতে হয় সেটা সে জানে।’ গত সপ্তাহেই চ্যাম্পিয়নস লিগে আন্ডারলেখটের সঙ্গে অবিশ্বাস্য পারফরম্যান্সে ৪ গোল করেছেন ইব্রা। ওয়েঙ্গার কি তাঁকে আর্সেনালে প্রলুব্ধ করতে চাইছেন? ওয়েবসাইট।প্লট বিভাজন ও নকশা অনুমোদন এবং ভবন নির্মাণের ছাড়পত্র দেওয়ার সাত মাসের মাথায় নির্মাণকাজ বন্ধের আদেশ দিয়েছেন চট্টগ্রামের জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষ। ওয়ারিশ সূত্রে মূল প্লটের একাংশের মালিকের দায়ের করা অভিযোগের ভিত্তিতে দেওয়া এ আদেশের বিরুদ্ধে আপত্তি জানিয়ে পাঁচ মাসেও প্রতিকার পাননি ভুক্তভোগী ব্যক্তি। ওই প্লটে ভবন নির্মাণের প্রাথমিক প্রস্তুতিতে তাঁর ১৫ লাখ টাকার বেশি খরচ হয়েছে বলে তিনি জানান।নগরের হালিশহর হাউসিং এস্টেটের ‘এল’ ব্লকের ১ নম্বর সড়কের ২ নম্বর লেনের পাঁচ কাঠা আয়তনের একটি প্লটের (প্লট নম্বর ৬) ১ দশমিক ৪৫ কাঠা অংশের হেবা ও ওয়ারিশ সূত্রে মালিক হামিদুল হক। গত বছর ১৬ জানুয়ারি প্লটটি বিভাজনের জন্য তিনি জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেন। আনুষঙ্গিক আইনি প্রক্রিয়া শেষে নির্বাহী প্রকৌশলী গত বছর ২৮ মে ৬/এ প্লট সৃষ্টি ও নকশা অনুমোদনের সুপারিশ করেন। ৫ নভেম্বর ওই প্লটে ৬/এ নামে আলাদা প্লট সৃষ্টি করে এর নকশা অনুমোদন দেওয়া হয় এবং ২৪ ডিসেম্বর তাতে আবাসিক ভবনের ছাড়পত্র দেওয়া হয়। এ বছর ১৮ এপ্রিল চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ ওই নকশা অনুমোদনকে স্থানীয় একটি পত্রিকায় বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে স্বীকৃতি দেয়।হামিদুলের অভিযোগ, সব আইনি প্রক্রিয়া শেষে গত ২২ জুন তাঁর নামে বরাদ্দ প্লটে ভবন নির্মাণকাজ করতে গেলে তিনি এবং তাঁর লোকজনকে বাধা দেন মূল প্লটের অংশীদার প্রতিবেশী হাজেরা বেগম। এ সময় নির্মাণকাজ না করার জন্য হুমকি দেন তিনি। এ ব্যাপারে হামিদুল ২৩ জুন থানায় সাধারণ ডায়েরি (জিডি) করেন।অন্যদিকে, ঘটনার চার দিন পর দিলওয়ারা হোছাইন রুবিনাসহ হাজেরা বেগম নতুন সৃষ্ট ও অনুমোদিত প্লটটির অনুমোদন ও নকশা বাতিলের জন্য জাতীয় গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানান। তাঁদের অভিযোগ, প্লটটি বিভাজনের ব্যাপারে তাঁদের নোটিশ দেওয়া হয়নি এবং বিভাজন সঠিক হয়নি। তাঁদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত ১৬ জুলাই ওই প্লটে নির্মাণকাজ বন্ধের আদেশ দেন গৃহায়ণ কর্তৃপক্ষের চট্টগ্রাম বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী।এ বিষয়ে হামিদুল হক জানান, সংশ্লিষ্ট সবাইকে জানিয়ে প্লট পরিদর্শন, কাগজপত্র পরীক্ষা ও সরেজমিন তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কর্তৃপক্ষ প্লট বিভাজন অনুমোদন দেয়। যে প্রকৌশলী ৬/এ প্লট সৃষ্টি ও নকশা অনুমোদনের সুপারিশ করেন এবং ২৪ ডিসেম্বর তাতে আবাসিক ভবনের ছাড়পত্র দিয়েছেন, তিনিই সাত মাস পর নির্মাণকাজ বন্ধের নোটিশ দিলেন, এটা রহস্যজনক।তিনি বলেন, ‘নির্বাহী প্রকৌশলীর নোটিশের পরিপ্রেক্ষিতে কাগজপত্র নিয়ে একাধিকবার তাঁর কার্যালয়ে গিয়ে বক্তব্য দিলেও কোনো সিদ্ধান্ত না দিয়ে বিষয়টি ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। সর্বশেষ গত ২৭ অক্টোবর দেখা করলে নির্বাহী প্রকৌশলী জানান, এ বিষয়ে তাঁর কিছু করার নেই।’ নির্বাহী প্রকৌশলী এ কিউ এম শাহজালাল মজুমদার বলেন, ‘আমরা উভয় পক্ষের বক্তব্য শুনে, কাগজপত্র দেখে, অভিযোগটি সামগ্রিকভাবে তদন্ত করে ঢাকায় প্রতিবেদন পাঠাব। সেখানেই বিষয়টি নিষ্পত্তি হবে।’ তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. রুহুল আমিন পাটওয়ারী বলেন, ‘কাগজপত্র যা দেবার, আমরা দিয়েছি। ওই কাগজপত্র দেখিয়ে এখন ওরা যেখানে যেভাবে পারে, সমস্যা সমাধান করুক।’রাজশাহীতে এক বছর ধরে পুলিশের বড় কোনো তল্লাশি অভিযান নেই। শুধু হরতাল ‘ডিউটি’ করে ক্লান্ত পুলিশ এখন আত্মরক্ষার চেষ্টা করছে। কোথায়, কারা ককটেল-বোমা বানাচ্ছে এসব ব্যাপারেও পুলিশের কোনো নজরদারি নেই। এ জন্য দফায় দফায় মার খেলেও হামলার আগে প্রতিরোধ ও পরে দুর্বৃত্তদের গ্রেপ্তার করতে পারছে না পুলিশ।পুলিশ বলছে, টানা অবরোধ-হরতালের নাশকতা থেকে রেললাইন রক্ষা, জ্বালানি তেল পাওয়ার প্ল্যান্টে নিরাপদে পৌঁছে দেওয়া, রাষ্ট্রের অতি গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা ও নির্বাচন কার্যালয় পাহারা দেওয়াসহ অনেক স্থানেই নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করতে হচ্ছে। এর বাইরে প্রতিদিন ভোর রাত সাড়ে দশটা পর্যন্ত পর্যায়ক্রমে ‘ডিউটি’ করতে হচ্ছে। নির্ধারিত কাজ করেই পুলিশ ক্লান্ত হয়ে পড়ছে।স্থানীয়রা জানান, সবশেষ গত বৃহস্পতিবার দুপুরে পুলিশের গাড়িতে বোমা হামলায় সিদ্ধার্থ চন্দ্র সরকার নামে পুলিশের এক সদস্য (কনস্টেবল) মারা যান। এতে আরও আট পুলিশ সদস্য আহত হয়েছেন। ওই দিন রাতে পুলিশ নগরের বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে আটজনকে আটক করে। এ ছাড়া নগরের কয়েকটি নির্দিষ্ট এলাকা থেকে নিয়মিত পুলিশের ওপর হামলার ঘটনা ঘটছে। হামলা করে তারা কোথায় গা ঢাকা দিচ্ছে সে ব্যাপারে আগ্রহ নেই পুলিশের।পুলিশ সূত্র আরও জানায়, ২০১২ সালের নভেম্বরে নগরের সাহেব বাজার এলাকায় অস্ত্র কেড়ে নিয়ে পুলিশের ওপর হামলার পর থেকে পুলিশ আত্মরক্ষামূলক কৌশল নিয়েছে।পুলিশ ও স্থানীয়দের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এক বছরে রাজশাহী নগরে পুলিশের সঙ্গে জামায়াত-শিবিরের ছোট-বড় শতাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। গত মঙ্গলবার নগরের বিনোদপুরে বন্দুক কেড়ে নিয়ে শিবিরের কর্মীরা মতিহার থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তাকে (ওসি) পিটিয়ে পা ভেঙে দেন।রাজশাহী মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের ওসি আলমগীর হোসেন বলেন, শিবিরের বহিরাগত কর্মীরাই মূলত এসব হামলায় নেতৃত্ব দেন।সাবেক মেয়র এ এইচ এম খায়রুজ্জামান বলেন, অভিযানের আগেই সোর্সের মাধ্যমে দুর্বৃত্তেরা খবর জেনে যাচ্ছে। মহানগর পুলিশের উপকমিশনার শাহ্ গোলাম মাহমুদ বলেন, তল্লাশি অভিযান হয় না তা নয়। লোকবল সংকটের কারণে বড় অভিযান হচ্ছে না।
শিশু, বৃদ্ধসহ সবাই এসেছেন। উৎসবের মাঠ কানায় কানায় পূর্ণ। সবার চোখেমুখে আনন্দের ঝিলিক। এ রকম আনন্দমুখর পরিবেশে দিনাজপুরের হাকিমপুর উপজেলার আদিবাসীরা উদ্যাপন করল কারাম উৎসব।গত বুধবার বিকেল পাঁচটায় আদিবাসীদের সংগঠন উপজেলা সমাজ উন্নয়ন সমিতি উপজেলার গোহাড়া আদিবাসী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে এ আয়োজন করে।আয়োজক সূত্রে জানা গেছে, উৎসব উপলক্ষে আদিবাসীদের নিয়ে নাচের প্রতিযোগিতা ও আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।ভারতীয় আদিবাসী জালকি মুরমু বলেন, ‘আমি ভারতের ঝাড়খন্ড থেকে কারাম উৎসব দেখতে এসেছি। প্রায় ৫০০ বছর ধরে আদিবাসীরা তাদের সংস্কৃতি ধরে রেখেছে। এর আগে আমার বাবাও কারাম উৎসব দেখতে এখানে আসতেন। এখানকার আদিবাসীরা এখনো তাদের ঐতিহ্য ও সংস্কৃতি ধরে রেখেছে। এটা দেখে আমার খুব ভালো লেগেছে।’মেঘালয়ের পাহাড় যেখানে এসে থেমে গেছে, ঠিক সেখান থেকেই জন্ম নিয়েছে আশ্চর্য এক জলবাগান, এলোমেলো সাদা মেঘের দল পাহাড়ে ঠোকর খেতে খেতে এসে ঝপ করে গা এলিয়ে দেয় এই জলের বিছানায়। এখানে নৌকা চলে জলের উচ্ছ্বাসে। সাতরঙা রংধনুর সবটুকু খুশি গায়ে জড়িয়ে ঘুমিয়ে থাকা এই অপরূপ জায়গাটার নাম টাঙ্গুয়ার হাওর।এবারে হাওরে গিয়েছিলাম নওয়াজেশ নলেজ সেন্টার থেকে। আমার ফেসবুক বন্ধু সুনামগঞ্জ জেলার সহকারী কমিশনার ও নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জেবুন নাহার আমাদের সব ব্যবস্থা করে দিলেন, হাসন রাজার বাড়ির ঘাট থেকে একটা ট্রলার নিয়ে রওনা দিলাম টাঙ্গুয়া হাওরের উদ্দেশে।মণিপুরি ঘাট পার হতেই সামনের দৃশ্যপট মুহূর্তে পাল্টে গেল। পানি থেকে জেগে ওঠা ডাঙা বাঁক খেয়ে উঠে গেছে দূরের পাহাড়ের দেয়ালে, যত দূর চোখ যায়, সবুজের মখমল। নৌকার পাশ দিয়ে বয়সী চোখজোড়া নিয়ে নিচে তাকালাম—নীলচে পানি, পানির নিচে শেওলার অস্তিত্ব পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে, নলখাগড়ার ডগা ভেসে ভেসে ঢেউয়ের দোলায় নাচছে হাওরজুড়ে। তার মাঝ দিয়েই মহাসড়কে গাড়ি চালানোর মতো করে শাঁই শাঁই করে ছুটে চলছি আমরা হাওরের উদ্দেশে। যাওয়ার পথে মাছের ঘের পড়ল একটা।ধীরে ধীরে রং বদলাচ্ছে পানির। নীল থেকে কালো, কালো থেকে সবুজ, আবার গাঢ় নীল। টানা ৬ ঘণ্টা পর আমরা পৌঁছলাম টাঙ্গুয়া হাওরের সবচেয়ে স্বচ্ছ অংশে, এখানে বর্ষা মৌসুমে মেঘালয়ের পাহাড় থেকে পানি এসে ভরে যায় প্রায় ১০০ বর্গকিলোমিটার এলাকা, শুকনো সতেজ ধানখেতগুলো ধীরে ধীরে হয়ে ওঠে জলের আধারে। এ সময়ে অগণিত হাওর আর বাঁওড় সব এক হয়ে যায়, পানিতে পানিতে মিলেমিশে জন্ম নেয় অসাধারণ এক স্বচ্ছ জলের আধার।বাংলাদেশের শেষ সীমান্ত টেকেরঘাটের এই অংশে হাওর দেখে মাথা খারাপ অবস্থা। জলের নিচে যেন জলবাগান—এক হাত লতা গুল্ম থেকে শুরু করে ১১ হাত লম্বা বিশাল গাছও ডুবে আছে, তার পাতায় পাতায় আবার রোদের ঝিলিক!অচেনা এক পৃথিবী মনে হয় যখন দেখি কোনো রকম ভেলা বা জাহাজ ছাড়াই থইথই পানিতে পইপই ভাসছে ছোট ছোট গ্রাম। পুরো হাওর গাছের সীমানা দিয়ে ঘেরা। সেই গাছও মাথাটুকু বাদে ডুবে আছে নীলের সমুদ্রে।সেই জলবাগানে ঘোরাঘুরি করার লোভ সামলানো অসম্ভব। গায়ে লাইফ জ্যাকেট চড়িয়ে সবাই একের পর এক টুপ টুপ করে ঝাঁপিয়ে পড়ল। আমরা ডুবসাঁতার নিয়ে চলে গেছি ঘন জঙ্গলে, পায়ে জড়িয়ে যাচ্ছে আয়েশি লতা, হাতে মুখে এসে লাগছে সবুজের রেনু, আর মাথার ওপরে কালো আলকাতরা মাখা নৌকার তলদেশ। সবকিছু ছাড়িয়ে চোখে এসে লাগল সূর্যের ঠান্ডা আলো!সেখান থেকে উঠে আমরা বিস্কিট চিবোতে চিবোতে যখন পৌঁছলাম শাপলা ফুলের বাগানে, তখন দিগন্তে সূর্যটা চোখ লাল করে তাকিয়ে আছে, তার চোখে ঘুমের আনাগোনা। মেঘের পর্দায় সে হারিয়ে যাওয়ার আগেই আমরা পৌঁছে গেলাম টেকেরঘাটে।কীভাবে যাবেনশ্যামলী পরিবহনে ঢাকা থেকে সুনামগঞ্জ পর্যন্ত ৫৫০ টাকা ভাড়া নেবে। সুনামগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে সাহেববাজার ঘাট পর্যন্ত রিকশায়। সেখান থেকে টাঙ্গুয়া হাওরের উদ্দেশে ইঞ্জিনচালিত নৌকা ভাড়া করবেন। প্রতিদিনের জন্য ভাড়া নেবে চার হাজার টাকা। হাওরে যেতে পাঁচ-ছয় ঘণ্টা সময় লাগবে। দু-তিন দিনের জন্য নৌকা ভাড়া করলে প্রয়োজনীয় বাজারসদাই করে নেবেন। হাওর ঘুরে রাতটা তাহিরপুর থানার ডাকবাংলোতে থাকতে পারেন। সঙ্গে তেমন কিছুই নিতে হবে না, তবে লাইফ জ্যাকেট অবশ্যই নেবেন। এটা বর্ষাকালে যাওয়ার রাস্তা। শীতকালে নৌকা চলবে না, সে ক্ষেত্রে আপনাকে সুরমা নদী পার হয়ে মণিপুরিঘাট থেকে মোটরসাইকেলে টেকেরঘাট হয়ে টাঙ্গুয়া হাওরে যেতে হবে। নভেম্বর মাসজুড়ে এখানে এমন পানি পাবেন। এর পর থেকে পানি শুকিয়ে যায়।বাঁশির ধ্রুপদি সুরে বিমোহিত দর্শক-স্রোতারা আরও একবার নতুন করে আবিষ্কার করলেন শিল্পী আজিজুল ইসলামকে। নগরের বিশদ বাঙলার পরম্পরা মিলনায়তনে ২১ নভেম্বর সন্ধ্যায় যেন সুরের ইন্দ্রজাল বুনলেন চট্টগ্রামের প্রখ্যাত এই সংগীতসাধক।অনুষ্ঠানের শুরুতে সূচনা বক্তব্য দেন বিশদ বাঙলার কর্ণধার আলম খোরশেদ। এরপর শিল্পী আজিজুল ইসলাম ভারতীয় শাস্ত্রীয় সংগীত বিষয়ে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। কথামালার পর শুরু হয় বাঁশি বাদন। শুরুতে আজিজুল ইসলাম আলাপ, জোড় ও ঝালাসমেত রাগ মারোয়ায় পূর্ণাঙ্গ বাদন উপহার দেন। এরপর তিনি একই ঘরানার রাগ পুরিয়া ও সোহিনী বাজিয়ে শোনান।সবশেষে মিশ্র খাম্বাজ রাগের একটি গৎ বাজিয়ে তিনি সেদিনের পরিবেশনার সমাপ্তি টানেন। বাঁশি বাজানো শেষে তিনি শ্রোতাদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। অনুষ্ঠান শেষে বিশদ বাঙলার পক্ষ থেকে মুজিবুল হক শিল্পীকে ধন্যবাদ জানিয়ে তাঁর হাতে একটি শুভেচ্ছাস্মারক তুলে দেন। বিজ্ঞপ্তি।রাজশাহীর সিরোইল সরকারি উচ্চবিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্রদের দ্বারা পরিচালিত সমাজসেবামূলক সংগঠন ‘সচেতন সাথী’ শুক্রবার গোদাগাড়ী উপজেলায় আদিবাসী ও দরিদ্রদের মাঝে কম্বল ও শীতবস্ত্র বিতরণ করেছে। সংগঠনটি উপজেলার ১৭টি গ্রামের আদিবাসী ও সুবিধাবঞ্চিত দরিদ্রদের মাঝে ২০০টি কম্বল ও ৫০০টি শীতবস্ত্র বিতরণ করে।নিজস্ব প্রতিবেদক, রাজশাহী
ভারতের সুপ্রিম কোর্ট গতকাল শুক্রবার দেশটির নির্বাচন কমিশনকে এক নির্দেশে বলেছেন, ভোটারদের ভোট প্রত্যাখ্যান করার অধিকার দিতে হবে। এই লক্ষ্যে ইলেকট্রনিক ভোটদান যন্ত্র বা ইভিএমে ‘ওপরের কাউকে নয়’ এমন একটি বোতাম রাখতে হবে। ব্যালট পেপারেও একই ধরনের ভোট দেওয়ার ব্যবস্থা থাকতে হবে।পিপলস ইউনিয়ন ফর সিভিল লিবার্টিজ নামের একটি বেসরকারি সংগঠনের দায়ের করা জনস্বার্থ মামলার শুনানি শেষে গতকাল সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি পি সত্যশিবম, বিচারপতি রঞ্জনা প্রকাশ দেশাই ও বিচারপতি রঞ্জন গগৈয়ের বেঞ্চ এই নির্দেশ দেন।এর মধ্য দিয়ে ভারতের ভোটাররা ‘না ভোট’ দেওয়ার অধিকার পেলেন। কোনো প্রার্থীকেই পছন্দ না হলে বিশেষ বোতাম টিপে তাঁরা ভোট প্রত্যাখ্যান করবেন। চলতি বছর অনুষ্ঠেয় পরবর্তী নির্বাচন থেকে এই নির্দেশ কার্যকরের জন্য নির্বাচন কমিশনকে বলা হয়েছে।সুপ্রিম কোর্ট আশা করছেন, ‘না ভোট’ নির্বাচনী প্রক্রিয়ায় ইতিবাচক পরিবর্তন আনবে। রাজনৈতিক দলগুলো স্বচ্ছ ভাবমূর্তির প্রার্থী মনোনয়নে বাধ্য হবে। ‘ওপরের কাউকে নয়’ এমন ধরনের ভোট ভোটারের অধিকারকে সমুন্নত করবে।আদালতের নির্দেশনামতো নভেম্বরে অনুষ্ঠেয় বিধান সভার নির্বাচনেই ভোটাররা ‘ওপরের কোনোটিই নয়’ এমন ভোট দিতে পারবেন। এনডিটিভি।সিলেট জেলার শ্রেষ্ঠ প্রাথমিক শিক্ষক নির্বাচিত হয়েছেন সদর উপজেলার চানপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সঞ্জয় কুমার নাথ। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়া রোধ, শতভাগ ভর্তি ও উপস্থিতি নিশ্চিতকরণ এবং লেখাপড়ার মানোন্নয়নের জন্য তিনি এ সম্মাননায় ভূষিত হয়েছেন। গতকাল সোমবার জেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা হজরত আলী এর সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, আগামী ৫ নভেম্বর বিভাগীয় পর্যায়ে শ্রেষ্ঠ শিক্ষক নির্ধারণী বৈঠক হবে।  সিলেট প্রতিনিধিবাংলাদেশ বার কাউন্সিলের ভাইস চেয়ারম্যান খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেছেন, সংঘাতময় অবস্থা থেকে দেশ ও দেশবাসীকে রক্ষা করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অবশ্যই একচ্ছত্র নির্বাহী ক্ষমতা ত্যাগ করতে হবে। বিরোধী দলের সঙ্গে সমঝোতার ভিত্তিতে একটি নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীন নির্বাচনের পথ বের করতে হবে। গতকাল বুধবার এক বিবৃতিতে তিনি এ দাবি জানান।খন্দকার মাহবুব অভিযোগ করেন, সরকার একদলীয় শাসন কায়েমের জন্য তাদের দলীয় সরকারের অধীনে প্রহসনের নির্বাচনের চেষ্টা করছে। তাদের এই নীলনকশার নির্বাচন প্রতিহত করার জন্য বিরোধী দলসহ সুশীল সমাজ প্রতিবাদমুখর। সরকার তা দমিয়ে রাখার অপচেষ্টা করছে। ফলে দেশে এক সংঘাতময় অবস্থা সৃষ্টি হয়েছে। তিনি বলেন, এ অবস্থায় সরকারের আজ্ঞাবহ নির্বাচন কমিশন একদলীয় নির্বাচনের ফলে জনরোষ হতে রক্ষা পাওয়ার জন্য সেনাবাহিনী মোতায়েনের পরিকল্পনা করে তাদের বিতর্ক করার অশুভ পদক্ষেপ নিচ্ছে।সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতির সম্পাদক মাহবুব উদ্দিন খোকন স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্বার্থে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী এবং সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিরপেক্ষ ভূমিকা পালনের আহ্বান জানানো হয়েছে। বিজ্ঞপ্তি।রাজশাহীতে বোমা হামলায় পুলিশ সদস্য নিহত হওয়ার ঘটনায় দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার আতঙ্কে ‘আত্মগোপনে’ আছেন বিএনপি নেতারা। এদিকে পুলিশ নেতাদের বাড়িতে অভিযানের নামে ভাংচুর চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি নেতাদের স্ত্রীরা। গতকাল বিকেলে নগর বিএনপি কার্যালয়ে সংবাদ সমেঞ্চলন তাঁরা এ অভিযোগ করেন। বিএনপির যুগ্মমহাসচিব মিজানুর রহমানের স্ত্রী সালমা শাহাদাত বলেন, রাজশাহীতে বিএনপি ও জামায়াত-শিবির নেতা-কর্মীদের বাড়িতে যৌথবাহিনীর অভিযানে ভাংচুর ও লুটপাট করা হয়েছে। সংবাদ সমেঞ্চলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য ও মেয়র মোসাদ্দেক হোসেনের স্ত্রী রেবেকা সুলতানা প্রমুখ।
গুনে গুনে ২০ বার ডিগ্রি পরীক্ষা দিয়েছিলেন দিনাজপুরের খোশবুল আলম। পাসের দেখা পাননি। তারপর? পড়ুন ধৈর্য আর অধ্যবসায়ের এক অসাধারণ কাহিনিসকালেই দিনাজপুর থেকে ঢাকায় এসে পৌঁছেছেন মো. খোশবুল আলম। ঢাকায় কী যেন একটা কাজ ছিল—সে কারণেই আসা। কথাবার্তা শেষে আমরা তখন খোশবুলের ছবি তুলতে ব্যস্ত। এতক্ষণ হাত-পা নেড়ে উচ্ছল ভঙ্গিতে কথা বলে যাওয়া মানুষটা কেন যেন ক্যামেরার মুখোমুখি হয়েই গুটিসুটি মেরে গেলেন। আলোকচিত্রী যতই বলেন, ‘আপনি একটু হাসেন। না হাসলে তো ছবি ভালো হবে না’, খোশবুল আলম ততই গুটিয়ে নেন নিজেকে। পাশে দাঁড়ানো খোশবুলের ভাগনে এবার কৌশলী হয়ে ওঠেন, ‘মামা, মনে করেন, আপনি আজকেই ডিগ্রি পাস করছেন। এবার হাসেন।’ ক্যামেরার দিকে তাকিয়ে নয়, খোশবুল ভাগনের দিকে তাকিয়ে হাসলেন। রহস্যময় হাসি। সেই হাসি আমাদের নিয়ে যায় অনেক পেছনে। সত্যিই তো, ২১ বার পরীক্ষা দিয়ে অবশেষে খোশবুল আলম যেদিন ডিগ্রি পাস করলেন, সেদিন তাঁর হাসিটা কেমন দেখতে হয়েছিল?পড়ালেখা করে যে...ভগীরপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে খোশবুলের পড়ালেখার শুরু। তাঁর ভাষ্যমতে, ‘মুক্তিযুদ্ধের সময় আমি ক্লাস ফোরে পড়তাম।’ ক্লাস ফাইভে বৃত্তি পাওয়া কৃষকপুত্র সে সময়ই পড়ালেখার প্রতি তাঁর আগ্রহ জানান দিয়েছিলেন। ধারাবাহিকতার প্রমাণ পাওয়া গেল এসএসসি পরীক্ষায়ও। ‘মাঝে নানা সমস্যায় দু-একবার বছর গ্যাপ পড়ছিল। আশি সালে এসএসসি দিলাম। আমার এলাকায় আমিই প্রথম সেকেন্ড ডিভিশন পাইয়া পাস করলাম।’ বলছিলেন খোশবুল।এরপর, ভর্তি হলেন দিনাজপুর কে বি এম কলেজে। বিজ্ঞান বিভাগে ভর্তি হলেও, প্রথম বর্ষের পাট চোকার আগেই খোশবুলের কাছে ‘বিজ্ঞান’ ব্যাপারটা কঠিন মনে হলো। দ্বিতীয় বর্ষে তাই পরীক্ষা দিলেন মানবিক বিভাগ থেকে। ফলাফল: ‘থার্ড ডিভিশন’। ‘তখন এরশাদ সরকারের আমল। সে বছর ২০ পার্সেন্ট পাস করছিল। আরও ভালো করার আশা ছিল, তবে থার্ড ডিভিশন পাইয়াও খুব একটা অখুশি হই নাই।’খোশবুল তখন নিজের পড়ালেখার খরচ নিজেই চালান। টিউশনি করেন। ক্লাস সিক্স-সেভেনের ৩০ থেকে ৪০ জন ছাত্রছাত্রী একসঙ্গে পড়তে আসে তাঁর কাছে। ওদিকে ছাত্রছাত্রীদের ‘মাস্টার মশাই’য়ের দৃষ্টি তখন অনেক দূরে। ইচ্ছা ছিল ইংরেজি বিভাগে পড়বেন, কিন্তু কাছাকাছি ভালো বিশ্ববিদ্যালয় ছিল না। আর্থিক টানাপোড়েনও একটা বাধা বৈকি। পরিচিত একজন উপায় বাতলে দিলেন, চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ইংরেজি বিভাগে ভর্তি হলে এক বাড়িতে থাকা-খাওয়ার ব্যবস্থা হবে। তবে একটা শর্ত আছে, পাস করার পর সেই বাড়ির মেয়েকে বিয়ে করতে হবে! খোশবুল আকাশ থেকে পড়লেন! এমন অদ্ভুত শর্তে রাজি হওয়া তাঁর পক্ষে সম্ভব নয়। অগত্যা দিনাজপুর ডিগ্রি কলেজেই স্নাতকে ভর্তি হলেন। ইচ্ছা, স্নাতক পাস করে স্নাতকোত্তর করবেন। সুযোগ পেলে বিসিএস দিয়ে সরকারি চাকরির চেষ্টা করবেন। মনোযোগী ছাত্রের মতো নিয়মিত ক্লাস করতে শুরু করলেন খোশবুল। ১৯৮৫ সাল। পরীক্ষার সময় ঘনিয়ে এল। রাত-দিন পড়ালেখা করে ফাইনাল পরীক্ষায় অংশ নিলেন। তাঁর ভাষ্যমতে, ‘পরীক্ষা ভালোই হইছিল।’ হাজারো স্বপ্ন নিয়ে তখন রেজাল্টের জন্য অপেক্ষা করছেন। খোশবুল তখনো জানেন না, একটা গোলকধাঁধায় আটকা পড়তে যাচ্ছেন তিনি!পাস-ফেলের সমীকরণপ্রথমবারের ডিগ্রি পরীক্ষার ফলাফল বের হলো। খোশবুল আলম অকৃতকার্য। একটু অবাক হলেও মেনে নিলেন খোশবুল। ভাবলেন, এ বছর হয়নি, পরের বছর হবে। আরও ভালো করে পড়ালেখা করতে হবে। ’৮৬ সালে পরীক্ষা দিলেন। ফলাফল: অপরিবর্তিত! এক বিষয়ে পাস, তো আরেক বিষয়ে ফেল। পাস-ফেলের সমীকরণে তখন এমনিতেই হাবুডুবু খাচ্ছেন, এরই মধ্যে বাড়ি থেকে বিয়ে দেওয়ার জন্য চাপ শুরু হলো। বাড়ির বড় ছেলের একটা ‘গতি’ করতে চান বাবা-মা। খোশবুল নারাজ। এহেন গতি তাঁর কাছে ‘ক্ষতি’ বলেই মনে হলো! ‘চাকরি নাই বাকরি নাই, এহনো ইন্টার পাস। বিয়া কি করমু?’ তাঁর এমন যুক্তি বাবা-মা মানলেন না। ১৯৮৬ সাল, ঘোরাবান্দের আবদুল হামিদের মেয়ে হামিদা বানুর পাশে বরের বেশে দেখা গেল খোশবুল আলমকে।এরই মধ্যে প্রতিবছর পরীক্ষা দিয়েই যাচ্ছেন তিনি। ফল একই—অকৃতকার্য! ’৮৮ সালে এক ছেলের বাবা হলেন। ’৮৯ সালে ঘরে এল যমজ সন্তান। ভাবলেন, এবার হয়তো ভাগ্য ফিরবে। হলো না। দুঃখী মানুষটাকে আরও দুঃখী করে দিয়ে তিন দিনের মাথায় ছেলে দুটোর মৃত্যু হলো।পরের বছরগুলো খোশবুলের জন্য খুবই ঘটনাবহুল। মেয়ে খালেদা খাতুনের জন্ম হলো। সরকারি চাকরির বয়স চলে যাচ্ছে, তাই বাধ্য হয়ে ’৯৫ সালে ভর্তি হলেন নীলফামারী হোমিওপ্যাথি কলেজে। অনেক পরিবর্তনের মাঝেও একটা বিষয় অপরিবর্তিত থেকে গেল। খোশবুলের ডিগ্রি পরীক্ষার ফল—অকৃতকার্য! নানা কাজে ব্যস্ত থাকলেও, খুব বিপাকে না পড়লে এর মাঝে প্রায় প্রতিবছরই ডিগ্রি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছেন তিনি। তিনবার পরীক্ষা দিয়েছেন কে বি এম কলেজ থেকে, বীরগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ থেকে পরীক্ষা দিয়েছেন পর পর ১২ বার, এরপর দিনাজপুর সরকারি কলেজ থেকে বহিরাগত ছাত্র হিসেবে পরীক্ষা দিতে শুরু করলেন। অকৃতকার্যের ভূত তাঁর পিছু ছাড়ল না।তত দিনে খোশবুলের স্কুল-কলেজের বন্ধুরা পড়ালেখা শেষ করে চাকরি করছেন। পরীক্ষার হলে গিয়ে বসতে হয় বন্ধুবান্ধবের ছেলেপুলেদের সঙ্গে! পরীক্ষার হলে যাঁরা দায়িত্বে থাকেন, তাঁরাও বয়সে ছোট। এসব কোনো কিছুই আমলে নেননি তিনি। ‘সেই শুরু থেইকা প্রত্যেকটা পরীক্ষায় দেখছি, আশেপাশে সবাই বই খুইলা, কাগজপত্র বাইর কইরা, এইটা-ওইটা দেইখা লেখতেছে। আমি কখনোই নকল করি নাই। মনে হইত, যা পারি তা-ই লিখমু। এমনও হইছে, শিক্ষকেরা আমারে ভাই বা চাচা ডাইকা সামনে বই খুইলা দিছে। বলছে, “এইবার অন্তত আপনি পাস করেন।” কিন্তু আমি কী দেখমু? বইয়ে যা আছে, সব আমি জানি। সব পারি। নকল করার তো প্রশ্নই আসে না। কিন্তু খাতায় লিখতে গেলেই কী জানি এলোমেলো হইয়া যায়!’১৮, ১৯, ২০তম বার গেল! জেদি মানুষটাও এবার দুর্বল হয়ে পড়লেন। মানুষজনের কটাক্ষ, অপমান আর নিতে পারছিলেন না। ‘২১ বারের সময় পরীক্ষা দিতে যাইতেছি। খুব বেশি কিছু পড়ি নাই। নতুন কইরা কী পড়মু? এতবার পড়ছি! মনে মনে আল্লাহরে কইলাম, আল্লাহ, এইবার আমারে পাস করায়া হল থেইকা বাইর করো। নাইলে হল থেইকাই উঠাইয়া নিয়া যাও। সিদ্ধান্ত নিছিলাম, এইবার পাস না করলে দূরে চইলা যামু। পরিচিত মানুষগুলারে আর মুখ দেখামু না। রেজাল্টের আগে তাড়াহুড়া কইরা ছেলের বিয়া দিলাম। পরে যদি আমি না থাকি!’আলোর দেখা২০১০ সাল। ভুল্লিরহাট বাজারে খোশবুলের হোমিওপ্যাথির দোকান ‘খালেদা হোমিও হল’। সন্ধ্যা থেকেই পাড়ার লোকজন তাঁর দোকানে আসা-যাওয়া করছেন, ‘খোশবুল, রেজাল্ট হইছে শুনলাম। তোমার খবর কী?’ খোশবুল কিছু বলেন না। ফলাফল দেখেননি, মনে মনে দূরে কোথাও চলে যাওয়ার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। এরই মধ্যে দোকানে এল বন্ধুর ছেলে রথীন, খোশবুলের সঙ্গেই সেবার পরীক্ষা দিয়েছেন। বললেন, ‘চাচা, রোল আর রেজিস্ট্রেশন নাম্বারটা কন। মোবাইলে দেখি।’ খোশবুল দিলেন। খানিক মুঠোফোন টিপাটিপি করে রথীনের উচ্ছ্বসিত কণ্ঠস্বর, ‘চাচা, আপনি তো পাস করছেন!’২১ বার পরীক্ষা দিয়ে অবশেষে ‘থার্ড ডিভিশন’ পেয়ে পাস করলেন খোশবুল। বাজারে পরিচিত-অপরিচিত সবাই ভিড় করতে লাগল খালেদা হোমিও হলে। ‘মিষ্টি খাওয়াও, মিষ্টি খাওয়াও!’ আশপাশে মিষ্টির দোকান নেই। সবাইকে ঝাল ঝাল পেঁয়াজু খাইয়ে খোশবুল উদ্যাপন করলেন তাঁর মিষ্টিসন্ধ্যাটা!ছেলে আবদুল হাকিম, মেয়ে খালেদা, স্ত্রী, নাতি-নাতনিকে নিয়ে এখন ভালোই আছেন ‘ডিগ্রি পাস’ খোশবুল। ২০১১ সালে স্নাতকোত্তর করার জন্য রংপুর কারমাইকেল কলেজে ভর্তি হয়েছেন। ভালো একটা চাকরির স্বপ্ন, কিংবা জ্ঞান অর্জনের আগ্রহ তাঁর এখনো ফিকে হয়ে যায়নি। হাসতে হাসতে বলছিলেন, ‘২০টা অপমানের মাল্য আমার গলায় আছে। এইবার দেখি, ২০টা সম্মানের মাল্য গলায় পরা যায় কি না!’ভুল্লিরহাটের খোশবুল আলমআসাদুল্লাহ্ সরকার, দিনাজপুরবীরগঞ্জ উপজেলার ভগীরপাড়া, ভুল্লিরহাট। হাটের পশ্চিম-উত্তর কোনায় শেষ প্রান্তে চারদিকে বুক-বরাবর ইটের দুর্বল গাঁথুনির দেয়ালের উপরিভাগ বাঁশের চাটাই দিয়ে ঘেরা। ওপরে টিনের চালা। ঘরের প্রবেশদ্বারে জীর্ণ সাইনবোর্ড। তাতে লেখা আছে ‘খালেদা হোমিও হল’।হোমিও ডাক্তারখানায় শিশুপুত্র সুফিয়ানের চিকিৎসা নিতে এসেছেন ভগীরপাড়ার ভ্যানচালক তরিকুল ইসলামের স্ত্রী শাপলা খাতুন। তিনি জানান, হোমিও চিকিৎসক খোশবুল আলমই তাঁর পারিবারিক চিকিৎসক।রোগী বিদায় হলে শুরু হলো আলাপ। ২১ বার পরীক্ষা দিয়ে অবশেষে ২০১০ সালে তৃতীয় বিভাগে ডিগ্রি পাস করেন খোশবুল।দিনাজপুর জেলার বীরগঞ্জ উপজেলার ১০ নম্বর মোহানপুর ইউনিয়নের ভগীরপাড়া গ্রামে তাঁর বাড়ি। খোশবুল আলমের এক মেয়ে এক ছেলে। নিজে বাড়ি করেছেন বীরগঞ্জ শহরে। ছেলে আবদুল হাকিমের বীরগঞ্জে বাড়ির পাশে মোটরসাইকেল মেরামতের গ্যারেজ আছে। মেয়ে খালেদা আছেন শ্বশুরবাড়িতে। ভুল্লিরহাটে রোগী দেখেন খোশবুল। ভুল্লিরহাটে খোশবুলের হোমিও চিকিৎসালয়ে কথা হলো তাঁর তৃতীয় শ্রেণী থেকে কে বি এম কলেজে ডিগ্রি পড়া পর্যন্ত শিক্ষাজীবনের সহপাঠী ইমদাদুল হকের সঙ্গে। ‘খোশবুলের ডিগ্রি পাসের লড়াইয়ের ইতিহাসে এলাকার মানুষ বিস্মিত, ‘আমি ভাবতে পারি না, ২৭ বছরে ও কী অসীম ধৈর্য নিয়ে ২১ বার ডিগ্রি পরীক্ষা দিয়েছে।’ বলছিলেন তিনি।কথা হলো খোশবুল আলমের পাড়ার বড় ভাই মো. বশির উদ্দিনের সঙ্গেও। চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সেকশন অফিসার ছিলেন। এখন গ্রামের বাড়িতে অবসর যাপন করছেন। খোশবুলের ডিগ্রি পাসের ইতিহাস প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে বলেন, ‘শুনে আশ্চর্য লাগে, খোশবুল প্রমাণ করেছে, “পড়ালেখার নির্দিষ্ট কোনো বয়স নেই, নিজের ইচ্ছাশক্তিই আসল”।’বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৮-দলীয় জোটের ডাকা টানা ৬০ ঘণ্টা হরতালের দ্বিতীয় দিনে গতকাল সোমবারও দেশের অন্তত তিনটি জেলায় রেললাইনে নাশকতা চালানো হয়। লালমনিরহাটে দুটি স্থানে রেললাইনের সিসি ক্লিপ ও ফিশপ্লেট খুলে ফেলে দুর্বৃত্তরা। এতে একটি স্থানে যাত্রীবাহী ট্রেনের ইঞ্জিনসহ অন্তত তিনটি বগি লাইনচ্যুত হয়। প্রায় সাড়ে ১২ ঘণ্টা সারা দেশের সঙ্গে লালমনিরহাটের রেল যোগাযোগ বন্ধ থাকে। চাঁদপুর ও কিশোরগঞ্জে রেললাইনে অগ্নিসংযোগ করা হয়।লালমনিরহাট রেলবিভাগীয় সহকারী পরিবহন তত্ত্বাবধায়ক (এটিএস) মো. সাজ্জাদ হোসেন প্রথম আলোকে জানান, গত রোববার দিবাগত গভীর রাতে সদর উপজেলার মহেন্দ্রনগর ও তিস্তা রেলস্টেশনের মাঝামাঝি বুদারু বাঁশের তল এলাকায় অন্তত ৩০০ ফুট রেললাইনের সিসি ক্লিপ ও ফিশপ্লেট তুলে ফেলে দুর্বৃত্তরা। সান্তাহার থেকে ছেড়ে আসা লালমনিরহাটমুখী ৭১৩ করতোয়া এক্সপ্রেসের ইঞ্জিন ও তিনটি বগি রাত দুইটার দিকে ওই স্থানে লাইনচ্যুত হয়। এতে হতাহতের ঘটনা না ঘটলেও গতকাল বেলা আড়াইটা পর্যন্ত সারা দেশের সঙ্গে লালমনিরহাটের রেল যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন ছিল।সাজ্জাদ হোসেন আরও জানান, রেললাইনের ক্ষতিগ্রস্ত অংশ মেরামত করে পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে বেলা আড়াইটার দিকে ট্রেন চলাচলের জন্য উপযোগী ঘোষণা করা হয়। এরপর ট্রেন চলাচল শুরু হয়।এদিকে সকালে লালমনিরহাট-পাটগ্রাম-বুড়িমারী রেলপথের হাতীবান্ধা মেডিকেল মোড় এলাকায় রেললাইনের ফিশপ্লেট খুলে ফেলে হরতাল-সমর্থকেরা। এতে সকাল ছয়টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত এই পথে ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল। লালমনিরহাট রেলবিভাগীয় চিফ ট্রেন কন্ট্রোলার শহিদুল ইসলাম এ কথা জানান।এ ছাড়া হরতালের প্রথম দিন জয়পুরহাট ও শান্তাহারে ট্রেনের বগি ভাঙচুর করা হয় এবং আগুন দেওয়া হয়।হরতাল-সমর্থকেরা দুপুর ১২টার দিকে চাঁদপুরের হাজীগঞ্জ উপজেলার হাজীগঞ্জ রেলস্টেশনের প্রায় আধা কিলোমিটার দূরে চাঁদপুর-লাকসাম রেলপথের প্রায় এক কিলোমিটার এলাকায় আগুন দেয় বিএনপি ও জামায়াত-শিবির। পরে স্থানীয় ও রেলওয়ের লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।হরতাল-সমর্থকেরা গতকাল বেলা পৌনে ১১টার দিকে কিশোরগঞ্জগামী সরারচর উপজেলার হালিমপুর রেলস্টেশনের কাছে রেললাইনে আগুন ধরিয়ে দেয়। স্থানীয় লোকজন প্রায় আধা ঘণ্টা চেষ্টার পর আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে। এ ছাড়া এগারসিন্দুর ট্রেন সরারচর স্টেশনে প্রায় আধা ঘণ্টা আটকে রাখে হরতাল-সমর্থকেরা। জামালপুরের সরিষাবাড়ীতে একটি ট্রেনের তিনটি বগিতে আগুন দেয় এবং ভাঙচুর করে হরতাল-সমর্থকেরা।ট্রেনের ইঞ্জিনে আগুন: নারায়ণগঞ্জ কেন্দ্রীয় রেলস্টেশন এলাকায় গতকাল সকালে একটি ট্রেনের ইঞ্জিনে আকস্মিক আগুন ধরে যায়। রেলওয়ের নারায়ণগঞ্জ স্টেশন মাস্টার গোলাম মোস্তফা জানিয়েছেন, এটা কোনো নাশকতা নয়। ইঞ্জিনের কার্বন থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। পরে ট্রেনের চালক ও রেলওয়ের কর্মীরা দ্রুত আগুন নিয়ন্ত্রণে আনেন। নির্ধারিত সময়ের ১৫ মিনিট বিলম্বে ট্রেনটি ঢাকার উদ্দেশে ছেড়ে যায়। সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মঞ্জুর কাদের জানান, রেলের ইঞ্জিনে আগুন লাগার বিষয়টি নাশকতা নয়।[প্রতিবেদনটি তৈরিতে সহায়তা করেছেন নিজস্ব প্রতিবেদক, কিশোরগঞ্জ এবং লালমনিরহাট, চাঁদপুর, জামালপুর ও নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি]চট্টগ্রাম চলচ্চিত্র কেন্দ্রের ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে সমকালীন বিশ্ব চলচ্চিত্র অধিবেশন শুরু হচ্ছে আগামীকাল ২৯ নভেম্বর। অধিবেশনে বিভিন্ন দেশের ছয়টি চলচ্চিত্র প্রদর্শিত হবে।২৯ নভেম্বর বিকেল পাঁচটায় বাংলাদেশের মোস্তফা সরয়ার ফারুকী পরিচালিত টেলিভিশন ও সন্ধ্যা সাতটায় কানাডার দীপা মেহেতা পরিচালিত মিডনাইটস চিলড্রেন প্রদর্শিত হবে। পরদিন শনিবার বেলা ১১টায় দ্য ব্লিং রিং, দি ইম্পসিবল, বিকেল পাঁচটায় দ্য গুড রোড এবং সন্ধ্যা সাতটায় গয়নার বাক্স প্রদর্শিত হবে। বিজ্ঞপ্তি।নাটোরের লালপুর উপজেলার মাচাপার্টি নিয়ে নড়েচড়ে বসেছে স্থানীয় প্রশাসন। গতকাল শনিবার উপজেলার দাঁইড়পাড়া এলাকা থেকে এক পৌর কাউন্সিলরসহ বিএনপি-জামায়াতের ১০ কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছে যৌথ বাহিনী।লালপুর থানা সূত্রে জানা যায়, যৌথ বাহিনীর সদস্যরা ভোরে দাঁইড়পাড়া গ্রামে বিশেষ অভিযান চালিয়ে বিএনপির কর্মী রহমতুল্লাহ, মুজদার হোসেন, শহীদ উদ্দিন এবং জামায়াতের কর্মী আফছার আলী, আরিফ হোসেন, সাইদুল ইসলাম ও ঈমান আলীকে আটক করেন। কিছুক্ষণ পর বড়াইগ্রাম পৌরসভার সামনে থেকে ৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর বিএনপির নেতা আবদুল জাব্বারকে আটক করে পুলিশ। এ ছাড়া কয়েনবাজার থেকে জামায়াতের কর্মী শাহাবুল ইসলাম ও কুজাইল থেকে বিএনপির কর্মী হীরা মিয়াকে আটক করা হয়।পুলিশ জানায়, রাস্তার পাশের গাছকাটা ও সহিংসতা সৃষ্টির অভিযোগে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে বিকেলে আটক ব্যক্তিদের নাটোরের আমলি আদালতে হাজির করা হয়। আদালত তাঁদের জেলহাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।লালপুরে মাচাপার্টির সন্ত্রাস নিয়ে গতকাল প্রথম আলো খবর প্রকাশ করার পর স্থানীয় প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে।
প্রতিপক্ষ বার্সেলোনার অনেকেই বলছেন, সিদ্ধান্তটা সঠিক ছিল না। বার্সেলোনা রিয়াল মাদ্রিদের চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী, সুতরাং ওই শিবির থেকে এমন প্রতিক্রিয়া আসতেই পারে। তবে গত বুধবার রাতে রিয়াল-এলচে ম্যাচে রিয়ালের পক্ষে শেষ মুহূর্তে রেফারির দেওয়া পেনাল্টিটা যে ভুল ছিল, সেটা স্বীকার করেছেন স্পেনের রেফারি কমিটির প্রধান সানচেজ আরমিনিও। বিতর্কিত ওই সিদ্ধান্তের জন্য রেফারি মুনিজ ফার্নান্দেজকে লা লিগার পরের দুই রাউন্ডের জন্য বিশ্রাম দিয়েছে রেফারি কমিটি। রয়টার্স।নরসিংদীর শিবপুর উপজেলায় ডাকাতের হামলায় একজন গুলিবিদ্ধ ও পাঁচজন ছুরিকাহত হয়েছেন। গত রোববার দিবাগত রাতে ডাকাতেরা উপজেলার চক্রধা ইউনিয়নের ভাটগাঁও গ্রামে ফাইজ উদ্দিন মুন্সির বাড়িতে ডাকাতি করে। পরে তারা পাশের তাতুয়াকান্দা গ্রামে সিরাজ উদ্দিনের (৫৫) বাড়িতে ঢুকলে স্থানীয় লোকজন তাদের ঘিরে ফেলেন। এ সময় ডাকাত দল গুলিবর্ষণ ও ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে। এতে সিরাজ উদ্দিন পেটে গুলিবিদ্ধ হন। পরে ডাকাতেরা পালানোর সময় এলাপাতাড়ি কোপাতে থাকলে আরও পাঁচজন আহত হন।  নরসিংদী প্রতিনিধিএশিয়ান ইউনিভার্সিটি ফর উইমেনের শিক্ষার্থীদের দিয়ে গঠিত নাটকের দল ‘মুখোশ ও মুখ’-এর দুদিনব্যাপী নাটকের প্রদর্শনী শুরু হবে কাল শুক্রবার। প্রদর্শনীতে ইসকাইলাস রচিত প্রমেথিউস বাউন্ড, উইনথর্প পার্কহার্স্ট রচিত বেগার অ্যান্ড কিং এবং ইয়ান পাউন্ড রচিত মিরর অব ওয়্যার মঞ্চস্থ হবে। ২৯ ও ৩০ নভেম্বর সন্ধ্যা সাড়ে ছয়টায় থিয়েটার ইনস্টিটিউট চট্টগ্রাম (টিআইসি) মিলনায়তনে প্রতিদিন দেড় ঘণ্টার প্রদর্শনীতে তিনটি নাটকই পর পর মঞ্চস্থ হবে। টিকিট প্রদর্শনীর আগে পাওয়া যাবে। বিজ্ঞপ্তি।বগুড়ার আদমদীঘিতে গতকাল মাদকসেবনের দায়ে তিনজনকে বিভিন্ন মেয়াদে বিনাশ্রম কারাদণ্ড দিয়েছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। উপজেলার বিনাহালী গ্রামের শামসুজ্জামান, নওগাঁর বাঙ্গাবাড়িয়ার আলমগীর হোসেন ও নওগাঁর চকমুক্তারপাড়ার তসলিম উদ্দীনকে শুক্রবার রাতে সান্তাহার থেকে আটক করে পুলিশ।আদমদীঘি (বগুড়া) প্রতিনিধি
ভারতের মুম্বাইয়ে গতকাল শুক্রবার একটি পাঁচতলা ভবন ধসে পড়ে একই পরিবারের তিনজনসহ অন্তত সাতজনের মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছে আরও অন্তত ১৯ জন।মুম্বাইয়ের মাঝগাঁও এলাকায় ব্রিহানমুম্বাই মিউনিসিপ্যাল করপোরেশনের (বিএমসি) আবাসিক ওই ভবনটির ধ্বংসস্তূপের নিচে নারী, শিশুসহ অনেকে আটকা পড়েছে।প্রায় ৩০ বছরের পুরোনো ওই ভবনটিতে ২১টি পরিবার বাস করত। ভবনটির জরুরি সংস্কার দরকার ছিল। গতকাল ভোর সোয়া ছয়টার দিকে এটি হঠাৎ ধসে পড়ে। ফায়ার ব্রিগেডের কর্মীরা তাৎক্ষণিকভাবে উদ্ধার তৎপরতা শুরু করেন।চলতি বছরে মুম্বাই ও আশপাশে কয়েকটি ভবন ধসে পড়েছে। এটি বড় ধরনের ভবনধসের দ্বিতীয় ঘটনা। পিটিআই।স্টুয়ার্ট ব্রডের ‘ওয়াক’ করা না-করা নিয়ে কম জল ঘোলা হয়নি। গত অ্যাশেজে ট্রেন্ট ব্রিজ টেস্টে স্লিপে পরিষ্কার ক্যাচ দিয়েও আম্পায়ারের সৌজন্যে বেঁচে গিয়েছিলেন এই ইংলিশ অলরাউন্ডার। কেন নিজ থেকে ক্রিজ ছাড়লেন না—এই প্রশ্ন তুলে ব্রডের মানসিকতা নিয়েই প্রশ্ন তুলেছিলেন অনেকে। অস্ট্রেলিয়ার কোচ ড্যারেন লেম্যান তো অস্ট্রেলীয় সমর্থকদের ফিরতি অ্যাশেজে ‘নির্লজ্জ প্রতারক’ ব্রডকে ত্যক্ত-বিরক্ত করার পরামর্শ দিয়ে জরিমানাও গুনেছিলেন।সেই ব্রড এখন দলের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ায়। সেখানেই আরেকটি অ্যাশেজের আগে ব্যাখ্যা করলেন কেন তিনি সেদিন হাঁটা দেননি। বিবিসি রেডিও ফাইভে সরাসরি প্রচারিত এক অনুষ্ঠানে কাল ব্রড বললেন ওই ঘটনা নিয়ে বিন্দুমাত্র অনুশোচনা নেই তাঁর, ‘আমার কোনো অনুশোচনা নেই। সত্যি বলছি আমি যদি আর কটা রান যোগ না করতাম ম্যাচটা আমরা হারতেও পারতাম। আর আমি যেহেতু কখনোই হাঁটা দিই না, তাই আম্পায়ার আউট না দিলে আমি কেন যাব?’মাইকেল ভনের নেওয়া ওই সাক্ষাৎকারেই ব্রড আরও জানিয়েছেন, অ্যাশেজ খেলেছেন এমন ১৮-১৯ জনের নাম তিনি বলতে পারবেন যাঁরা ক্যাচ দিয়ে কখনোই ক্রিজ ছেড়ে চলে যান না। ওয়েবসাইট।আগামী ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৪ সালের মাধ্যমিক স্কুল সার্টিফিকেট (এসএসসি) ও সমমানের পরীক্ষা শুরু হবে। তত্ত্বীয় পরীক্ষা শেষ হবে আগামী ১৩ মার্চ। গতকাল বুধবার এই পরীক্ষার সময়সূচি ঘোষণা করা হয়েছে।ঢাকা মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক এস এম ওয়াহিদুজ্জামান গতকাল পরীক্ষার সময়সূচি দেওয়ার বিষয়টি প্রথম আলোকে জানান।গত কয়েক বছর ১ ফেব্রুয়ারি থেকে এসএসসি পরীক্ষা শুরু হলেও এবার বিশ্ব ইজতেমার কারণে কয়েক দিন পেছানো হয়েছে বলে শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র জানিয়েছে।সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড় থেকে গাইবান্ধার গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত ঢাকা-রংপুর মহাসড়কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার অংশে সশস্ত্র ‘নিরাপত্তা চৌকি’ বসিয়েছে সেনাবাহিনী। মহাসড়কে নাশকতা ঠেকাতে এবং নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে এসব চৌকি বসানো হয়েছে।গতকাল শনিবার মহাসড়কে কিছু পর পর বালুর বস্তার বেষ্টনী তৈরি করে চৌকি বানানো হয়েছে। সেখানে সশস্ত্র অবস্থান নিয়েছেন সেনাসদস্যরা। এ কাজে সেনাবাহিনীকে সহযোগিতা করছে পুলিশ। তবে দীর্ঘ এই মহাসড়কজুড়ে ঠিক কতটা ‘চৌকি’ বসানো হয়েছে, কৌশলগত কারণে তা বলতে চাননি সেনা কর্মকর্তারা।বগুড়ার পুলিশ সুপার মো. মোজাম্মেল হক জানান, মহাসড়কের নিরাপত্তায় সেনাবাহিনীর দুটি ব্যাটালিয়ন কাজ করছে। পুলিশের পক্ষ থেকে তাদের সহযোগিতা করা হচ্ছে।জেলা পুলিশের সূত্র জানায়, সাম্প্রতিক হরতাল-অবরোধ ও রাজনৈতিক কর্মসূচির আগে-পরে সিরাজগঞ্জের হাটিকুমরুল মোড় থেকে গোবিন্দগঞ্জ পর্যন্ত মহাসড়কের প্রায় ১০০ কিলোমিটার অংশে যানবাহনে ব্যাপক নাশকতা, ভাঙচুর ও আগুন দেওয়ার ঘটনা ঘটে। মহাসড়কে এই তাণ্ডব ও নাশকতা ঠেকাতে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী হিমশিম খাচ্ছিল।গতকাল সরেজমিনে মহাসড়কের বিভিন্ন অংশ ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক শ গজ পরপর মহাসড়কের পাশে বালুর বস্তা দিয়ে ‘নিরাপত্তা চৌকি’ বসানো হয়েছে। এসব চৌকিতে অবস্থান করছেন তিন থেকে চারজন সেনাসদস্য। তাঁরা যুদ্ধক্ষেত্রের মতো মহাসড়ক লক্ষ্য করে অস্ত্র তাক করে আছেন। চৌকিতে সেনাসদস্যদের সঙ্গে পোশাকধারী পুলিশ-সদস্যদেরও দেখা গেছে।মহাসড়কে সেনাবাহিনীর নিরাপত্তা চৌকি স্থাপন করায় পরিবহনের চালক ও মালিকদের মধ্যে বেশ স্বস্তি নেমে এসেছে। শাহ ফতেহ আলী পরিবহনের বাসচালক আবু বক্কর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘এত দিন মহাসড়কে কোনো নিরাপত্তা ছিল না। রাস্তায় গাড়ি বের করলেই কারণে-অকারণে দুষ্কৃতকারীরা হামলা চালাত। এখন সেনাবাহিনী মহাসড়কে অবস্থান নেওয়ায় সাহস পাচ্ছি।’বগুড়া মোটরমালিক গ্রুপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম বলেন, মহাসড়কে নিরাপত্তা দিতে সেনাবাহিনী এগিয়ে আসার পর পরিবহনে নাশকতা কতটা বন্ধ হবে, তা নিশ্চিত হওয়া যাবে পরের হরতাল-অবরোধের সময়। কারণ, যানবাহনে নাশকতা হয় কার্যত রাজনৈতিক কর্মসূচিকে ঘিরে। তবে সেনাসদস্যরা সশস্ত্র অবস্থান নেওয়ায় পরিবহনের মালিক ও শ্রমিকেরা এখন অনেকটা নিরাপদ বোধ করছেন।
জাতীয় দাবার ষষ্ঠ রাউন্ডে কাল মুখোমুখি হয়েছিলেন দুই গ্র্যান্ডমাস্টার নিয়াজ মোরশেদ ও জিয়াউর রহমান। এ রাউন্ডে জিয়ার কাছে হেরেছেন বর্তমান চ্যাম্পিয়ন নিয়াজ। জিয়া সাদা ঘুঁটি নিয়ে ইংলিশ ওপেনিংয়ে খেলে জিতেছেন ৪০ চালের মাথায়। এ জয়ে ৬ খেলায় পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে দ্বিতীয় স্থানে জিয়া। সাড়ে পাঁচ পয়েন্ট নিয়ে শীর্ষে মিনহাজউদ্দিন। তৃতীয় গ্র্যান্ডমাস্টার আবদুল্লাহ আল রাকিবের পয়েন্ট সাড়ে চার, চতুর্থ এনামুল হোসেন রাজীবের চার। সাড়ে তিন পয়েন্ট নিয়ে এঁদের পরেই আছেন নিয়াজ।১৮ দলের ডাকা টানা তিন দিনের হরতালের দ্বিতীয় দিনে গতকাল সোমবার বগুড়ায় আদালত চত্বরে হাতবোমার বিস্ফোরণ, যুবলীগের কার্যালয়, অ্যাম্বুলেন্স ও হজযাত্রীদের বাসে হামলার ঘটনা ঘটেছে।হরতালের পক্ষে-বিপক্ষে লাঠি হাতে শহরের সাতমাথা এলাকায় মিছিল-সমাবেশ করেছে হরতাল-সমর্থক ও হরতালবিরোধীরা। অপরদিকে নন্দীগ্রাম উপজেলা সদরে হরতালের সমর্থনে মিছিল বের করা নিয়ে বিএনপির দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে সাংবাদিকসহ ছয়জন আহত হয়েছেন।প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সোমবার সকাল থেকেই পিকেটাররা শহরের বিভিন্ন মোড় ও পাড়া-মহল্লায় অবস্থান নেয়। এ সময় পিকেটাররা পাড়া-মহল্লার ছোট ছোট মুদি ও পানের দোকান পর্যন্ত বন্ধ করে দেয়।রোববারের মতো গতকালও সকাল থেকে শহরের বিভিন্ন স্থানে ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। সকাল সাড়ে ১০টার দিকে বগুড়া জেলা জজ আদালত চত্বরে পরপর দুটি হাতবোমার বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। এ ছাড়া বেলা ১১টার দিকে শহরের সবুজবাগ এলাকায় ছাত্রলীগের একটি ছাত্রাবাস, গালাপট্রি, চেলোপাড়া, টিটু মিলনায়তন সেউজগাড়ি, খান্দার, স্টেশন সড়কসহ বিভিন্ন স্থানে কমপক্ষে ৩০টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটায় হরতাল-সমর্থকেরা। সন্ধ্যার পর শহরের সেউজগাড়ি এলাকায় ছাত্রশিবিরের মিছিল থেকে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়।রোববার দিবাগত রাত সাড়ে ১২টার দিকে ঢাকা থেকে দুটি বাসে হজফেরত যাত্রীরা বগুড়ায় ফেরার পথে শাজাহানপুর উপজেলা সদরের কাছাকাছি পৌঁছালে হরতাল-সমর্থকেরা তাতে হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে কয়েকটি রাবার বুলেট ছুড়ে হামলাকারীদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। সকাল আটটার দিকে বগুড়া শহরতলির বনানী এলাকায় পিকেটারদের হামলা-ভাঙচুরের শিকার হয় গাবতলী স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের একটি সরকারি অ্যাম্বুলেন্স।চালক আলম হোসেন জানান, বগুড়ার মোহাম্মদ আলী হাসপাতালে রোগী নামিয়ে দিয়ে গাবতলীতে ফেরার পথে অ্যাম্বুলেন্সটি হামলার শিকার হয়।নন্দীগ্রামে বিএনপির দুই পক্ষে সংঘর্ষ: এদিকে নন্দীগ্রাম উপজেলা সদরের বাসস্ট্যান্ড চত্বরে বগুড়া-৪ আসনের বিএনপিদলীয় সাংসদ মোস্তফা আলীর পক্ষে-বিপক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, পাল্টাপাল্টি মিছিল বের করার জন্য সেখানে ওই দুই পক্ষের নেতা-কর্মীরা অবস্থান করছিলেন।একপর্যায়ে উভয় পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ বাধে। সংঘর্ষের ছবি তুলতে গেলে স্থানীয় সাংবাদিক আবু মুসার ওপর হামলা চালানো হয়। হামলাকারীরা মুসার মোটরসাইকেল ও ক্যামেরা ভেঙে ফেলে। সংঘর্ষে তিনিসহ বিএনপির ছয়জন নেতা-কর্মী আহত হন।নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শাহজাহান আলী বলেন, পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে ৬৬টি রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়া হয়েছে।সাংসদ মোস্তফা আলী বলেন, দলে মনোনয়নপ্রত্যাশী নতুন কয়েকজন নেতা একজোট হয়ে বহিরাগত লোকজন নিয়ে বিএনপির ওপর এই হামলা চালিয়েছে।মনোনয়নপ্রত্যাশী বগুড়া জেলা বিএনপির সহসভাপতি রাফি পান্না অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘জনবিচ্ছিন্ন সাংসদের ইন্ধনে দলে ঘাপটি মেরে থাকা আওয়ামী লীগের লোকজন আমাদের ওপর হামলা চালিয়েছে।’এবার আমন মৌসুমে প্রতি কেজি ৩০ টাকা দরে দুই লাখ টন চাল সংগ্রহ করবে সরকার। গতবারের তুলনায় এবার কেজিতে চার টাকা দাম বাড়ানো হলেও চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা তিন লাখ টন থেকে কমিয়ে দুই লাখ টন করা হয়েছে।গতকাল বুধবার খাদ্য পরিকল্পনা ও পরিধারণ কমিটির (এফপিএমইউ) সভায় চাল সংগ্রহের এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। নতুন এই লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ১ ডিসেম্বর থেকে আগামী বছরের ফেব্রুয়ারিজুড়ে চাল সংগ্রহ চলবে। গত বোরো মৌসুমে সরকার ১০ লাখ টন ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছিল। প্রতি কেজি চালের দাম নির্ধারণ করা হয়েছিল ২৯ টাকা। কিন্তু এক দফা সময় বাড়িয়েও লক্ষ্যমাত্রার চেয়ে এক লাখ ৬৯ হাজার টন কম ধান-চাল সংগ্রহ করে খাদ্য বিভাগ। গত আমন মৌসুমে ২৬ টাকা কেজি দরে তিন লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করলেও সংগ্রহ হয়েছিল দুই লাখ ৭৫ হাজার টন।গতকালের সভায় জানানো হয়, এ বছর এক কোটি ৩০ লাখ টনের বেশি আমন উৎপাদিত হয়েছে। প্রতি কেজি ধানের উৎপাদন ব্যয় হয়েছে ১৭ টাকা দুই পয়সা এবং প্রতি কেজি চালের উৎপাদন খরচ ২৫ টাকা ৪২ পয়সা।ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক ও অর্থনীতিবিদ মাহবুব হোসেন এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, দেশের বিভিন্ন এলাকায় আমন ওঠা শুরু করেছে। ফলে কিছুদিনের মধ্যে ধানের দাম কমতে শুরু করবে। ধানের দর কমে যাতে কৃষক ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সে জন্য সরকারের উচিত ছিল চার থেকে পাঁচ লাখ টন চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা।খাদ্য বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, সরকার গত বোরো ও আমন মৌসুমের মতো এবারও শুধু চালকলের মালিকদের কাছ থেকে চাল কিনবে। খাদ্য বিভাগ আশা করছে, ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহ থেকে ওই চাল সরকারি খাদ্যগুদামে প্রবেশ করা শুরু করবে। সরকারের খাদ্য সংগ্রহ বাবদ যে বাজেট আছে, তাতে খাদ্য বিভাগ চাইলে আরও তিন লাখ টন চাল সংগ্রহ করতে পারে।সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, বর্তমানে সরকারি খাদ্যগুদামে আট লাখ ৩১ হাজার ১৬৬ মেট্রিক টন চাল ও এক লাখ ৩০ হাজার ৫৭৫ টন গম রয়েছে। বাজারে প্রতি কেজি মোটা চাল ২৯ থেকে ৩২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। আর প্রতি মণ ধান ৬৫০ থেকে ৮০০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।এফপিএমইউর সভায় খাদ্যমন্ত্রী রমেশ চন্দ্র সেন সভাপতিত্ব করেন। কমিটির সদস্য অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত, কৃষিমন্ত্রী মতিয়া চৌধুরী, বাণিজ্যমন্ত্রী গোলাম মোহাম্মদ কাদের এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়গুলোর সচিব ও ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।রাজবাড়ীর গোয়ালন্দ উপজেলার দৌলতদিয়া যৌনপল্লি থেকে এক কিশোরীকে উদ্ধার করা হয়েছে। গোয়ালন্দঘাট থানার পুলিশ গত শুক্রবার রাতে অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে। কিশোরীর বাড়ি টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলায়।পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, প্রায় এক বছর আগে ওই কিশোরী (১৭) ঢাকার মিরপুর এলাকায় একটি পোশাক কারখানায় চাকরি নেয়। কিছুদিন পর স্থানীয় এক তরুণের সঙ্গে তার পরিচয় হয়। পরিচয়ের সূত্র ধরে একপর্যায়ে ওই তরুণ বেড়ানোর কথা বলে তাকে দৌলতদিয়া যৌনপল্লি এনে কালি বাড়িওয়ালির কাছে বিক্রি করে দেয়। কয়েক দিন আগে এক ব্যক্তি ওই কিশোরীর কাছে এলে সে তাকে বিষয়টি তার বাবা ও মাকে জানানোর অনুরোধ করে। ওই ব্যক্তির কাছ থেকে জানতে পেরে গত বৃহস্পতিবার তার বাবা ও মা গোয়ালন্দঘাট থানায় এসে বিষয়টি পুলিশকে জানান। ওই দিনই পুলিশ যৌনপল্লির কালি বাড়িওয়ালির ঘরে অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে।গোয়ালন্দঘাট থানার এসআই স্বপন কুমার দাস জানান, আদালত কিশোরীর মা-বাবার নাগরিকত্ব সনদ না পাওয়ায় তাকে নিরাপত্তা হেফাজতে পাঠানোর নির্দেশ দেন।