summary
stringlengths
1
29.6k
genre
stringclasses
7 values
Label
int64
0
6
#BookReview বইঃ চাঁদের পাহাড় ধরনঃ অ্যাডভেঞ্চার লেখকঃ বিভূতিভূষন বন্দ্যোপাধ্যায় পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ৭৯ প্রকাশকঃ জয় প্রকাশন ভারত বাংলার এক নিভৃত পল্লী গাঁয়ের সহজ সরল প্রাণোচ্ছ্বল ছেলে সঙ্কর । এফ.এ পাশ করা গাঁয়ের ফুটবলের নামকরা সেন্ট্রাল ফরোয়ার্ড, নামজাদা সাঁতারু সঙ্করের দিনগুলো কাটছিল বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিয়ে, ঘুমিয়ে আর বাঁওড়ে মাছ ধরে । এমন সময় সঙ্করের মা একদিন তাকে বলেন যে, তার বাবার শরীর ভালো নয় কাজেই সঙ্করকে একটা চাকরীর চেষ্টা করতে হবে । মায়ের কথাটা সঙ্করেকে ভাবিয়ে তুলেছে । কে তাকে চাকরি দেবে ? সে চেনেই বা কাকে ? সঙ্করদের গ্রামের এক ভদ্রলোক পাটকলে চাকরি করতেন তার বিশেষ সুপারিশে সঙ্কর পাটকলের কেরানির পদে চাকরি পায় কিন্তু সঙ্করের মন উড়ে যেতে চায় পৃথিবীর দূর, দূর দেশে শত শত দুঃসাহসিক কাজের মাঝখানে । লিভিংস্টোন, স্ট্যানলির মতো, হ্যারি, জনস্টন মার্কো পোলো, রবিনসন ক্রুসোর মতো । আসলে বাঙালী যে সৃষ্টিই হয়েছে কেরানী, স্কুলমাষ্টার, ডাক্তার বা উকিল হবার জন্য । অজ্ঞাত অঞ্চলের অজানা পথে পাড়ি দেওয়ার আশা তাদের পক্ষে নিতান্তই দুরাশা । কাজেই সঙ্কর নিজের নিয়তিকে মেনেই নিয়েছিল পাটকলের কেরানি হিসেবে । তারপর দৈববলে একদিন সঙ্কর তার স্বপ্নের দেশ আফ্রিকায় একটি রেলওয়ে কনস্ট্রাকশনের কাজ পেয়ে যায় । উগান্ডার মোম্বাসা থেকে রেলপথ গিয়েছে কিসুমু-ভিক্টোরিয়া নায়ানজা হ্রদের ধারে-- তারই একটা শাখা লাইন তৈরি হচ্ছিল আর সঙ্কর সেখানেই একটি কনস্ট্রাকশন ক্যাম্পের কেরানি ও সরকারি স্টোরকিপার হয়ে এসেছে । উগান্ডার এই অঞ্চল সিংহের রাজ্য । সিংহের লোলুপ রক্তক্ষুধায় প্রান হারায় আফ্রিকায় সঙ্করের একমাত্র বাঙালি বন্ধু তিরুমলসহ ক্যাম্পের কয়েকটি আফ্রিকান কুলি । সিংহের উপদ্রব আর বর্ষাকালের আগমনে সেখান থেকে ক্যাম্প সরিয়ে নেয় কনস্ট্রাকশন বোর্ড । এখান থেকে ৩০ মাইল দূরে একটি ছোট্ট স্টেশনের স্টেশন মাস্টারের কাজ পেয়ে জিনিসপত্র নিয়ে সঙ্কর সেখানে চলে গেল । এই স্টেশনে সেই একমাত্র কর্ম্মচারী । আফ্রিকার গহীন মরু অঞ্চলের সেই একমাত্র মানুষ। দিনে একটিমাত্র ট্রেন সেটি চলে গেলেই গহীন মরুর বুকে সঙ্করের সঙ্গী বিপদ আর ভয় । হিংস্র সিংহ আর আফ্রিকার সবচেয়ে বিষধর সাপ ব্লাক মাম্বার হাতে প্রাণ হারাতে বসেছিল সঙ্কর কিন্তু তবুও সঙ্করের কোন ভাবান্তর নেই কেননা এই জীবনই যে সঙ্কর চেয়েছিল । বিপদসংকুল মরুর বুকেও সঙ্কর রাইফেল হাতে ঘোড়ায় চেপে ঘুরে বেড়ায় যেন বিপদকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয় । একদিন মরুর বুকে মুমূর্ষু অবস্থায় ডিয়াগো আলভারেজ নামের এক পর্তুগিজ প্রসপেক্টরকে খুঁজে পায় সঙ্কর যা পরবর্তীতে সঙ্করের জীবনকে আমূল পাল্টে দেয় । অসুস্থ আলভারেজকে চিকিৎসা করে সারিয়ে তুলে সঙ্কর জনমানবহীন মরুভূমিতে একজন সঙ্গী পেয়ে যায় । গল্পে গল্পে সঙ্কর জেনে ফেলে আলভারেজ একজন দক্ষ অনুসন্ধানী । আফ্রিকার মরু, অরণ্য, পাহাড়-পর্বত সবকিছুই তার নখদর্পণে । হঠাৎ করেই একরাতে আলভারেজ সঙ্করকে প্রস্তাব দেয় তার সঙ্গে হীরার খনি "মাউন্টেন অব দি মুন" এর খোঁজে যাবার জন্য । সঙ্করও কালবিলম্ব না করে আলভারেজের প্রস্তাবে রাজি হয়ে যায় । পরদিনই চাকরিতে ইস্তফা দিয়ে সঙ্কররা বেড়িয়ে পরে তাদের অভিযানে । বিপদ সংকুল অরণ্য মাড়িয়ে দুর্গম পর্বতশৃঙ্গ পেড়িয়ে সঙ্কর ও ডিয়াগো আলভারেজ এগিয়ে চলে তাদের স্বপ্নের "মাউন্টেন অব দি মুন"-এর খোঁজে । পথে আফ্রিকার আদিম উপজাতি মাসাইদের এলাকা জুলু ভিলেজে আতিথিয়তা গ্রহণ করে সঙ্কর ও আলভারেজ । গোত্র প্রধানকে তারা তাদের অনুসন্ধানী উদ্দেশ্যের কথা বলতেই তিনি তার ঘোর বিরোধীতা করে জানান যে, যারা "মাউন্টেন অব দি মুন" এর খোঁজে যায় তারা আর কখনো ফিরে আসে না । বুনিপ নামের এক অপদেবতা আছে ঐ এলাকার রক্ষি হিসেবে, বুনিপের এলাকা থেকে কেউ ফিরে আসতে পারে না । কিন্তু স্বপ্নের আস্বাদ পেতে রোদে পুড়ে বৃষ্টিতে ভিজে নানান বিপদ সংকুল পথে দিনরাত তারা এগিয়ে যায় রত্নের খোঁজে । দিনের পর দিন মাসের পর মাস আফ্রিকার অজানা অরণ্যে চলতে চলতে ফুরিয়ে যায় তাদের রসদ সামগ্রী- খাদ্য, বন্দুকের টোটা । এভাবে একদিন তারা পৌঁছে যায় বুনিপের এলাকায় । সঙ্করের জীবনের বিপত্তি ঘটে এখানেই । সারা জীবনের হীরার খনি আবিষ্কারের স্বপ্নকে অসম্পূর্ণ রেখে বুনিপের হাতে প্রাণ হারায় ডিয়াগো আলভারেজ ।। আলভারেজকে হারিয়ে সঙ্কর গুপ্তধনের সন্ধান করা ছেড়ে দিয়ে ফিরে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিল । সেখান থেকে উত্তর-পূর্ব দিকে অরণ্য পেরিয়ে রয়েছে ভয়ঙ্কর কালাহারি মরুভূমি, মরুভূমির পর চিমানিমানি পর্বত পেরোলেই দঃ রোডেসিয়া এমনটাই এক রাতে ম্যাপ দেখার সময় আলভারেজ সঙ্করকে বলেছিল । একটি বন্দুক এবং অবশিষ্ট অল্প কিছু সংখ্যক টোটা নিয়ে সঙ্কর ফিরে যাওয়ার পথ ধরল ।। শেষ পর্যন্ত সঙ্করের পরিনতি কি হয়েছিলো ?? সঙ্কর কি পেরেছিল সভ্য জগতে ফিরে যেতে ?? মরুভূমি ও পাহাড়ের পথে সঙ্করের কি হয়েছিলো, সে কি পাহাড় ও মরুভূমি পেরোতে পেরেছিল ?? এসব প্রশ্নের উত্তর "চাঁদের পাহাড়" বইটির কাছ থেকে জেনে নিবেন । ♥️📖📚
Childrens-Book
2
বেশির ভাগ বই ই আমার ভাললাগে। কিন্তু এই টাইপের বই এটাই ফার্স্ট পড়লাম। বইটার গল্প বা বর্ণনা পুরাই আলাদা। এখানে অনেক চিন্তাভাবনার ঘটনা ছিল কিন্তু আমি সে সব নিয়ে চিন্তা করার সুযোগই পায়নি। কারন আমি এটা চিন্তা করতেই ব্যাস্ত ছিলাম যে কাষ্ঠাসন, যুথযান, তঙ্কা, ধুম্রকাঠি, লৌহবর্ত্ম এসব শব্দ মানুষ পাই কোথায় থেকে। এসব শব্দ তো জীবনেও শুনিনি। আর বই এ নির্ঘণ্ট না থাকলে জীবনেও জানতে পারতাম না।
Fiction
0
মিসির আলি এখন তার ছাত্র ফারুকের শ্বশুর বাড়ি কইলাটি গ্রামে আছেন। ফারুকের মতে সেখানে অতিপ্রাকৃত, অবিশ্বাস্য ঘটনার সন্ধান পাওয়া যাবে। ফারুকের শ্বশুর তরিকুল ইসলাম একজন স্কুল শিক্ষক, ভালো মানুষ শুধু একটু বেশি কথা বলে।মিসির আলি তার জামাইয়ের শিক্ষক বলে তাকে অনেক আদর যত্ন করা হচ্ছে। আদরের পরিমাণ এতোই যে তা অত্যাচারের রূপ নিয়েছে। ফারুকের স্ত্রী আয়না। মিসির আলি কইলাটি আসার দুই দিনের মধ্যে আয়নার সাথে দেখা হয় না। আয়না মাঝে মাঝে দুই তিন দিন এক নাগাড় দরজা বন্ধ করে পড়ে থাকে, কিছু খায় না। বাইরেও বের হয় না। এটা নিয়ে তার বাবা মার মধ্যে কোন রকমের অস্থিরতা নাই, তারা বরং দিব্বি মেহবানের আদর যত্ন করছে। তারা মেহবানের যত্ন নিয়ে অস্থির । এই ঘটনায় মিসির আলির সামান্য খটকা লাগে, এমন কি হতে পারে মেয়ের এই অবস্থা দেখে তারা অভ্যস্ত। কোন বাবা মাই সন্তানের অস্বাভাবিকতায় অভ্যস্ত হতে পারেন? তৃতীয় দিন ভোরে আয়নার সাথে মিসির আলির দেখা হয়। অনেক রূপবতী সে, মিসির আলি। মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে ছিলেন আয়নার দিকে। কিন্তু সকালে নাস্তা করার সময় মিসির আলি আয়নাকে দেখে আচমকা ধাক্কা খান। একি দেখছেন তিনি একি ভ্রান্তি তাঁর সামনে। দেখার ভুল নাকি প্রকৃতির আলোছায়ার খেলা? মিসির আলি আয়নার সাথে কথা বলে জানতে পারেন তার স্বামী তাকে দেখে মাঝে মাঝে মুগ্ধ হন আবার মাঝে মাঝে হতভম্ব হন। " নদীর নাম রায়না। সে কোথাও যায় না। সমুদ্রকে পায় না। "
Fiction
0
ছোটজাতের ছোটজাত হাসিম। পিতৃপ্রদত্ত নামখানা একরকম ভুলতে বসেছে। বান্যিয়ার পুত বলে ডাকে লোকে। তার এই নামকরণের পেছনে গভীর লজ্জা আর বেদনা লুকায়িত। পূর্বপুরুষ ছিল বনেদী হিন্দু। বাপ তার ভালবেসেছিল কাজী বাড়ির মেয়ে জরিনাকে। তার টানে উদাস হল, ঘর ছাড়ল, সবশেষে ধর্ম ত্যাগ করল। নগদ অর্থ আর স্বর্ণ তুলে দিল বাড়ির কাজের লোকের হাতে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত জরিনাকে পাওয়া হল না। পরিবর্তে বিয়ে হল ঐ বাড়িরই দাসীর সাথে। নির্মম মানসিক পীড়ায় পার করে দিল একটা জীবন। মরা মুখটা মাও দেখতে পেল না। মুসলমানের মরা দেখা যে পাপ। হোক না নিজের ছেলে। বাবার উপর খুব ক্ষোভ জন্মে হাসিমের মনে। কি দরকার ছিল এসব করে? যন্ত্রণা তো শুধু নিজে ভোগ করল না। উত্তরাধিকার সূত্রে দিয়ে গেল হাসিমকে। আজ লোকের কাছে সে করুণার পাত্র, ঘৃণার পাত্র। দুমুঠো খাবারের ব্যবস্থা করতেই যেখানে শরীরের রক্ত পানি করতে হয় সেখানে সাধ, আহ্লাদ বা আবেগের মূল্য কোথায়? স্ত্রী সুফিয়াকে নিয়ে তার ছোট্ট পৃথিবী। চাওয়া-পাওয়ার বালাই নেই। তবে এতটুকু বেঁচে থাকাকে টেনে নিতেই সমাজ সংসারে প্রতিনিয়ত যুদ্ধ করতে হয়। সমাজের উঁচুতলার মানুষেরা যেন হাসিমদের কৃপা করে ধন্য করে। তারা কাজ- কর্জ না দিলে চলবে কি করে তাদের? খলু ব্যাপারী, কাদের, কানা আফজলদের তো আর খাবার নিয়ে ভাবতে হয় না। তিন চার বছরের চিকন চাল মজুদ করে সালিশ আর দাঙ্গা হাঙ্গামা করে বাড়ায় সম্পত্তির পরিধি। খলু ব্যাপারীর হাতিয়ার ভাতিজি জোহরা। তাকে দুবার বিয়ে দিয়ে ছাড়িয়ে এনেছে। আর তার খোরপোষের বাহানায় জমি আদায় করে নিয়েছে পাত্রপক্ষ থেকে। এখন আবার খেলছে নতুন চাল। কাদিরও কম যায় না। আর সবাইকে ছাড়িয়ে গেছে কানা অাফজল। এক সময়কার ফরমায়েশ খাটা লোকটি আজ গণ্যমান্য ব্যক্তি। তাদের সাথে সুদখোর অধরবাবুদেরও খাতির বিস্তর। ধর্মের সীমারেখা তাদের বেলায় অকেজো। ধর্মের দোহাই দিয়ে বড়মানুষেরা প্রতিনিয়ত ছোটলোকদের অবহেলা করে। তাদের পাপ- পুণ্যের হিসাব করে। হাসিম বাঁদীর ছেলে একথা তাকে ভুলতে দেয় না। বুড়ি দাদী রক্তের টানে লুকিয়ে চুরিয়ে নাতিকে দেখতে আসে। সে কেন ধর্ম কর্ম করে না এ নিয়ে মুরুব্বী গোছের লোক দু'কথা শুনিয়ে দেয়। জীবনের গঞ্জনা তাকে বিষিয়ে তোলে। এর মধ্যেই তার সাথে পরিচয় ঘটে অসাধারণ কিছু মানুষের সাথে। যাদের কাছে তার সামাজিক অবস্থান নিয়ে কোন মাথাব্যথা নেই। জাত-ধর্ম নিয়ে কোন বাছ-বিচার নেই। ওলাওঠায় গ্রাম যখন মৃত্যুপুরীতে পরিণত হবার পথে তখন তারা ঘুরে ঘুরে তাদের সেবা করে। মুসলমানদের কবর দেয়। হিন্দুদের সৎকার করে। নিজেকে নতুন করে চেনে হাসিম। মানুষের সবচেয়ে বড় পরিচয় সে মানুষ। জীবনের আলোকিত পথ কি তাকে আলিঙ্গন করবে না সে আবার অন্ধ সমাজের অতল গহ্বরে হারিয়ে যাবে?
Fiction
0
ফালতু একটা বই। পয়সা নষ্ট। বাজে লেখনী। একই জিনিস বারবার কপি পেস্ট করা।
Political
3
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা। বইয়ের নামঃ আর কতদিন। প্রকাশনীঃঅনুপম প্রকাশনী। লেখকঃজহির রায়হান। প্রচ্ছদ:ধ্রুব এষ। মূল্য:৬০ টাকা। পৃষ্ঠা সংখ্যা:২৮। 'আর কতদিন' জহির রায়হানের এক বড় গল্প। উপন্যাসিকাও বলা চলে। এই উপন্যাসিকাটির মূল প্রেক্ষাপট কি তা বলা মুশকিল।লেখক লিখেছেন-মুক্তিযুদ্ধের কথা।।শুধু মুক্তিযুদ্ধও না।লিখেছেন পৃথিবীর সকল বর্বর মানুষদের দ্বারা ছোটজাতদের অন্যায়ভাবে হত্যা করার বিষয়। একসময় হিংস্র কুকুরদের হাত থেকে রক্ষা পেতে প্রায় ১৯ জন সকল বয়সের মানুষ আশ্রয় নেয় এক বৃদ্ধার বাড়িতে।বৃদ্ধাটিও খুঁজে বেড়াচ্ছে তার ছেলে তপুকে। অন্যদিকে তপু।সে খুঁজে বেড়াচ্ছে তার প্রেমিকা ইভাকে।সাদা চামড়ার মানুষদের অত্যাচারকে পাশ কেটে এক সময় উদ্ধার করে নেয় ইভাকে।তারা ছুটে চলে।ছুটে চলে শান্তির লক্ষে।পথে খুঁজে পায় এক ছোট ছেলে'কে। তপু আর ইভা এবং সাথে ছোট ছেলেটা ছুটে চলতে চলতে এসে পড়ে তপুদের বাড়ির সামনে। ভেতরে অবস্থানরত বাড়ির অন্য লোকেরা তপুদের দেখে তুপর ক্রুদ্ধ ভাইরা এবং তার বাবা তাদের'ই মারতে আসে এবং তাড়া করে বেড়ায়। আবারো ছুটে চলে তপু,ইভা।ছুটে চলে নির্যাতিতদের ভীড়ে।খুঁজে পেতে চায় এক টুকরো সুখ।অন্যদিকে তপুর মা, যিনি হন্যে হয়ে খুঁজছেন তপুকে সেসব সন্তানহারা মায়েদের ভীড়ে। এই নিশৃশংসতার শেষ কোথায়?জাতি,ধর্ম,বর্ণ ইত্যাদি ভেদে অত্যাচারের মাত্রার শেষ হবে কি আর? পাঠপ্রতিক্রিয়া:গল্পটি তিনবার পড়েছি। প্রেক্ষাপট বুঝতেই বেশ খানিকটা বেগ পেতে হয়েছে।জহির রায়হান যে মাস্টার স্টোরিটেলার তা তার রেখে যাওয়া লেখা পড়লেই বুঝা যায়। গল্পটি পড়ে বেশ কয়েকবার নড়েচড়ে বসবেন। "কি হচ্ছে,ক্যানো হচ্ছে।"এসব বলে বারংবার দ্বিধায় পড়ে যাবেন। রেটিং:৫/৫।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ বোতল ভূত লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃ প্রতীক প্রকাশনা সংস্থা প্রচ্ছদঃ ধ্রুব এষ পৃষ্ঠাঃ ৬৪ মুদ্রিত মুল্যঃ ১০০৳ #রিভিউঃ “বোতল ভূত” মূলত শিশু-কিশোরদের জন্যে রচিত উপন্যাস। মজার ভৌতিক গল্প বললেও ভুল হবে না। বইটি পড়ে আমার মনে হয়েছে তা বড়দেরও আনন্দ দিতে পারে। সুতারাং বড়-ছোট সকলে পড়তে পারেন এই বইটি। উপন্যাসে হুমায়ুন আহমেদ উত্তম পুরুষে কাহিনীর বর্ণনা দিয়ে যান। একদিন ক্লাসে এগারো বছর বয়সী লেখাপড়ায়-বিমুখ হুমায়ুন আহমেদকে তার বন্ধু মুনির অবাক করে দিয়ে বলল, “এই হুমায়ুন, ভূত পুষবি?” ভূত পুষবে মানে? ভূত কি কুকুর ছানা নাকি যা চাইলে সহজে পোষা যায়? এমন প্রশ্নগুলো হুমায়ুনের মনে কৌতূহল বাড়াতে থাকে। সাথে সাথে সে রাজি হয়ে রওনা দেয় ভুতের বাচ্চা আনতে। তখন সন্ধ্যাবেলা। গাছপালায় ঢাকা জঙ্গুলে জায়গায় শেওলা-ঢাকা দো’তলা বাড়িতে তারা উপস্থিত হয়। বাড়ির নাম শান্তিনিকেতন। দরজায় কড়া নাড়তেই বেরিয়ে আসে সন্ন্যাসীর মতন চেহারার একলোক। ঠিক যেন দেখতে অবিকল রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মতন। পরনে আলখাল্লার মত লম্বা পোশাক। লোকটির আগে অন্য নাম ছিল, এখন অবশ্য সকলে রবিবাবু নামেই ডাকে। কি অদ্ভুত, তাই না? সেই অদ্ভুত লোকটিই ছোট্ট শিশিতে ভরে দিল ভুতের বাচ্চা। সেই ভুতের বাচ্চাকে সঙ্গে করে হুমায়ুন যখন ঘরে এলো তখন কি হল জানতে নিশ্চয় ইচ্ছে করছে? না থাক, আমি আর বলে গল্পের মজা নষ্ট করতে চাইনা। আপনারাই পড়ে ফেলুন এই ব্যতিক্রমধর্মী মজার ভৌতিক উপন্যাসটি। হুমায়ুন আহমেদের উপন্যাসগুলো বরাবরই সাহিত্যরস সমৃদ্ধ ও সুখপাঠ্য। আর ছোটোদের জন্যে “বোতল ভু্ত” ক্ষেত্রে এর ব্যততায় ঘটেনি। লেখায় মূলভাব প্রকাশে লেখক ছিলেন সহজ ও সাবলীল। যা ছোটদের জন্যে একেবারে পাঠের উপযোগী। বইটির রেটিং ১০ এ ১০ দিলেও কম হয়ে যায়। আপনার বাচ্চাকে গিফট করতে বা নিজের সংগ্রহে রাখতে আজই কিনে ফেলুন। রকমারি লিঙ্কঃ https://www.rokomari.com/book/1306/বোতল-ভূত
Childrens-Book
2
পাঠকনন্দিত লেখক ডক্টর মুহম্মদ জাফর ইকবাল স্যার মূলত সাইন্স ফিকশন লিখে বেশি পরিচিত, সবাই জানে যে বিজ্ঞান নিয়েই তার কাজ কারবার। কিন্তু তার লেখা এমন ছোটগল্পের সংখ্যাও কিন্তু নেহাতই কম নয় যেখানে চিরাচরিত বৈজ্ঞানিক বিশ্বাসকে বুড়ো আঙ্গুল দেখিয়ে আদিভৌতিক ও সাধারণ চিন্তাভাবনায় ব্যাখাতীত ঘটনার উল্লেখ ঘটে নাই। 'ও' নামক গল্পগ্রন্থে ঠিক তেমনই ৫টা গল্পের সন্নিবেশন ঘটেছে। কিন্তু স্থূল অর্থে এই বইটিকে ভূতের বই বলা একদমই ভুল হবে কেননা সরাসরি ভূত প্রেতের কথা লেখক একটিবারের জন্যেও কোন গল্পে আনেন নি। বরং তিনি তার এই গল্পগুলোর মাধ্যমে মানুষের জীবনের সেই সব ঘটনাকেই তুলে ধরতে চেয়েছেন, যার ব্যাখ্যা আমরা খুঁজে পাই না বলে সেগুলোকে প্যারানরমাল বা অস্বাভাবিক ঘটনা বলে আখ্যায়িত করে থাকি। এইসব গল্পের আরেকটি যে বিশেষত্ব তা হল, হুমায়ুন আহমেদের অনেক আদিভৌতিক গল্পে আমরা দেখেছে যে অস্বাভাবিক ঘটনাগুলোর পেছনে কোন অতি স্বাভাবিক কারণ প্রভাব ফেলেছে কিনা সে ব্যাপারে আলোকপাত করা হয়েছে; কিন্তু মুহম্মদ জাফর ইকবাল তার এই গল্পগুলোতে সেই ধরণের কোন ব্যবচ্ছেদের চেষ্টা চালান নাই। ঘটনাগুলোকে সাদা চোখে যেমন দেখায়, ঠিক সেভাবেই নিজের ভাষায় উপস্থাপন করেছেন। ব্যাখ্যাতীত ব্যাপার স্যাপারের ব্যাখ্যা খুঁজে বের করার দায় নিজের দিকে টেনে নেন নাই, পাঠকের উপরই ছেড়ে দিয়েছেন। বইয়ের প্রথম গল্প 'ও' যেখানে লেখক তার এক দুঃসম্পর্কের মামা, গহর মামার জবানিতে গল্পটি শুনিয়েছেন। গহর মামার যুবক বয়সের গল্প যখন তিনি পড়তেন একটি মাদরাসায়। কবিরাজি চিকিৎসার জন্যে এক বিচিত্র স্বভাবের ব্যক্তিকে তার বাড়ির লোকেরা মাদরাসায় রেখে যায়। লোকটি গহর মামা ও তার বন্ধু মতিনকে 'ও'র কথা বলে যে প্রায়ই লোকটার কাছে এসে লোকটাকে কোন একটা শাস্তি দেয়। 'ও' নাকি আবার বিভিন্ন প্রাণী এমনকি মানুষেরও রক্ত খায়। তো, সেদিন রাতে লোকটার উপর 'ও' ভর করে। তারপর গহর মামা ও তার বন্ধু মতিনের কি হয় শেষ পর্যন্ত, সেই নিয়েই কাহিনী। ফিনিশিংটা গহর মামা নিজে করেন নাই। ব্যাপারটা চেপে যেতে চেয়েছেন। লেখক তার নিজের ভাষায় যথাসম্ভব ভয়ংকর একটি সম্ভাব্য সমাপ্তির কথা তার মামাকে শুনিয়েছেন। মামা কিন্তু বলেন নাই লেখকের অনুমান ঠিক কিনা। এই জিনিসটাকে আমি বলব জাফর স্যারের একটা মাস্টার স্ট্রোক। গল্পের আমেজ বজায় রেখে তিনি নিজের মত করে গল্পের সমাপ্তি ঘটিয়েছেন কিন্তু অবিশ্বাসীরা যাতে সহজেই গল্পটাকে অবিশ্বাস করে উড়িয়ে দিতে না পারে, সেজন্য আসল সত্যিটাকে চেপেও গেছেন। ফলে সবারই গল্প শেষে জানার আগ্রহ থাকবে, আসলেই শেষ অব্দি কি হয়েছিল। দ্বিতীয় গল্প 'আলমারি'। লেখক দোকান থেকে নতুন একটা আলমারি কিনে আনলেন। আলমারি কিনতে গিয়েই দোকানে এক মহিলার দেখা পান, যে অভিযোগ নিয়ে এসেছিল যে তার কিশোর বয়সী ছেলে ঐ দোকানে কাজ করত কিন্তু কয়েকদিন ধরে বাড়ি ফেরে নাই। যাইহোক, লেখক বাসায় আলমারি কিনে আনার পর থেকেই লক্ষ্য করতে লাগলেন, আলমারির ভেতর থেকে কেমন একটা শব্দ বের হচ্ছে। এক রাতে দেখা পেলেন বারো তের বছরের এক ছেলের, কিছুক্ষণ থেকেই যে অদৃশ্য হয়ে গেল। কিন্তু ছেলেটার অস্তিত্বের আলামত হিসেবে লেখক আলমারির ভেতরে খুঁজে পেলেন রক্তের চিহ্ন। তাহলে কি এবার লেখক খুঁজে বের করতে পারবেন ছেলেটির পরিণতির কাহিনী? সবমিলিয়ে এটিও বেশ সহজ সরল ভাষায় লেখা আকর্ষণীয় একটি কাহিনী। তবে নতুনত্ব বেশি নেই। প্যারানরমাল একটা ঘটনার ইঙ্গিত হয়ত আছে তবে এরকম ইঙ্গিত হামেশাই দেখা যায় এধরণের গল্পে। পরের গল্প 'মা মণি' বেশ ইমোশনাল একটা গল্প। টুম্পার মা শায়লা মারা গেলে নার্গিস তাকে নিজের কাছে এনে রাখল। কিন্তু কিছুদিন পর থেকেই সে টুম্পার মধ্যে অস্বাভাবিকতা দেখতে পেল। টুম্পা দাবি করতে লাগল, তার মা নাকি অন্য কোন এক জগত থেকে তার সাথে যোগাযোগ করছে। নার্গিস ক্রমেই তার প্রমাণও পেতে লাগল। একদিন শায়লা সরাসরি এসে হাজির হল টুম্পার কাছে, তাকেও নিয়ে যাবে মৃত্যুর পরের জগতে - নিজের কাছে। কি করবে নার্গিস? সে কি টুম্পাকে বাঁচাতে পারবে? হয়ে উঠতে পারবে টুম্পার 'মা মণি'? এটাও চিরাচরিত ছকে আবদ্ধ একটা কমন কাহিনী। তবে জাফর ইকবাল স্যারের জাদুকরী লেখায় পুরনো মশলায় মাখা নতুন মুড়ির স্বাদ মন্দ লাগবে না! 'মরিয়মের গ্রাম' গল্পে বলা হয়েছে সুন্দরবনের এক আজব গ্রামে কথা, যে গ্রামের মানুষ বাইরের কারুর সাথে মেশে না আর পূজা করে এক অপদেবতার। তাদের স্বচক্ষে দেখতে এক সাথি নিয়ে সেই গ্রামে হাজির হলেন লেখক। দেখতে পেলেন কিছু আশ্চর্য ঘটনা। সেই ঘটনারই এক পর্যায়ে দেবতাকে তুষ্ট করতে বলি দেয়া হচ্ছিল মরিয়মকে। শেষ মুহুর্তে নাটকীয়ভাবে লেখক বাঁচালেন সেই মেয়েটিকে। এটাকে ঠিক আদি ভৌতিক কাহিনীর কাতারে ফেলা যায় না। তবে গ্রামের অশিক্ষিত জনগণ আর তাদের বিভিন্ন ভয়ংকর কুসংস্কার ও তার পরিণতির কথা বেশ পরিষ্কারভাবেই ফিটে উঠেছে এই গল্পে। 'মড়া' এই বইয়ের শেষ ও আমার সবচেয়ে পছন্দের গল্প। এই গল্প লেখক শুনিয়েছেন এক সদ্য পরিচিত ব্যক্তি আবিদ হাসানের জবানিতে। এনজিও'র কাজে এক চরাঞ্চলে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানেই দেখা পান মড়ার, যে নাকি এই পিশাচ। তার কুদৃষ্টি কারো ওপর পড়লে নাকি তাদের ওপর অমঙ্গলের ছায়া নেমে আসে। এমন কয়েকটি ঘটনার উল্লেখও পাওয়া যাবে বইতে। মড়ার কুদৃষ্টি পড়েছিল গ্রামের চেয়ারম্যান কাজেম আলীর পরিবারের ওপরও। কাজেম আলী প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে ওঠে। ওদিকে আবিদ হাসানের সাথে বেশ আন্তরিকতার একটা সম্পর্ক গড়ে ওঠে মড়ার। কিন্তু আবিদ হাসান পারেন না মড়াকে কাজেন আলীর রোষের হাত থেকে বাঁচাতে। গ্রামবাসী চোখ তুলে নেয় মড়ার। তারপর কাজেম আলী চড়াও হয় মড়ার ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত আবিদ হাসানের ওপর। তখন মড়া ঠিকই আবিদ হাসানকে বাঁচাতে এগিয়ে আসে। প্রাণ হারাতে হয় মড়া ও তার পোষা কুকুর বাঘা - দুজনকেই। কিন্তু মড়া তো পিশাচ তথা জিন্দালাশ। তাই সে মরে না। খুব সম্ভব তার আত্মা স্থানান্তরিত হয় এক দেহ থেকে অন্য দেহে। এভাবেই সে ফিরে এসে প্রতিশোধ নেয় কাজেম আলীর ওপর। এই-ই হল মড়ার কাহিনী। একেবারেই অবিশ্বাস্য। লেখক এবং আবিদ হাসান দুজনেই তা স্বীকার করেছেন। কিন্তু তারপরও তো দুনিয়ায় কত ব্যাখ্যাতীত ঘটনাই থাকে। এটাও সেরকমই ঘটনা কিনা, সে বিষয়ে সংশয়ও প্রকাশ করেছেন তারা। গল্পটি পড়ার পর পাঠকের মনেও একই মনোভাবের সৃষ্টি হবে। পরিশেষে একটা কথাই বলব, এই সংকলনের সব গল্পই যে খুব ভাল তা না। তবে অন্তত দুটো গল্প আমার ব্যক্তিগতভাবে দারুণ লেগেছে। পাঠকেরও মুহম্মদ জাফর ইকবালের লেখা এই টাইপের গল্পগুলো অবশ্যই ভাল লাগবে, এই আশা করছি।
Thriller
1
বই : নাথিং লাস্টস ফরএভার লেখক : সিডনি শেলডন অনুবাদক : অনীশ দাস অপু প্রকাশক : অনিন্দ্য প্রকাশ প্রকাশকাল : ফেব্রুয়ারি, ২০১১ ঘরানা : মেডিকেল থ্রিলার পৃষ্ঠা : ২৮০ মুদ্রিত মূল্য : ৩৬০ টাকা বইটি এমন সময়ের পটভূমিতে লেখা, যখন মহিলা ডাক্তার এর সংখ্যা ছিল হাতেগোনা। সাল ১৯৯০। এমবারকাডেরো নামক এক বিশাল কাউন্টি হাসপাতালে প্রথমবারের মত প্রথম বর্ষের রেসিডেন্ট হয়ে এল তিনজন নারী। পেগি টেলর, ক্যাট হান্টার এবং হানি ট্যাফট। এর মধ্যে আবার দুজনের আছে কালো অতীত। প্রায় হাজারখানেক পুরুষ ডাক্তার এর মাঝে মাত্র তিনজন মহিলা যেন অথই সাগরে পড়ল। কিন্তু ওরা নিজেরা খুব ভাল বন্ধু হয়ে গেল, আর নিজেদের যোগ্যতা দিয়ে এখানে টিকে থাকার প্রতিজ্ঞা করল। বিরামহীন ডিউটি, সংখ্যালঘু হওয়ার যণ্ত্রণা, আবার কখনো কোন ডাক্তার এর ব্যাক্তিগত আক্রোশ এর শিকার, এমন নানা প্রতিকূল ঘটনা ওদের জীবন অতিষ্ঠ করে তুলল। এক রোগীর স্বেচ্ছামৃত্যুতে সহায়তা করে তাকে হত্যার দায়ে ফেঁসে গেল পেগি, কারণ রোগী তার নামে রেখে গেছে এক মিলিয়ন ডলার। "আর কোনদিন কোন পুরুষকে আমার শরীর স্পর্শ করতে দেবনা" বলে প্রতিজ্ঞা করা ক্যাট প্রেমে পড়ল এক খেলোয়াড়ের, যা তাকে নিয়ে গেল করুণ পরিণতির দিকে। অন্যদিকে হানি তার সমস্যাগুলোর সমাধান করতে লাগল তার পুরনো উপায়ে। শেষ পর্যন্ত এই তিন কন্যার ভাগ্যে কি ছিল? পাঠ প্রতিক্রিয়া : আমি থ্রিলার পড়তে অসম্ভব পছন্দ করি। সিডনি শেলডনের হলে তো কথাই নেই। উনার মত বিশাল কাহিনীর ট্যুইস্ট আর কারো লেখায় পাইনি এখনো। প্রায় প্রতিটা বই ই এমন যে, শেষ না করে উঠা কঠিন। অন্যরা যেমন হুমায়ূন আহমেদ এর বই রেখে রেখে পড়ছে, আমি এনার বেলায় ঠিক তাই করছি, ফুরিয়ে গেলে যে আর পাবোনা। শেল্ডনের অন্য বইগুলোর থেকে এটা একটু কম ভাল লেগেছে, কাহিনীর ট্যুইস্ট এবং রহস্য কম ছিল। পেগি এবং ক্যাট চরিত্র দুটো ভাল ছিল। চরম দু:সময়েও ভেঙে না পড়ে ঘুরে দাঁড়ানোর শিক্ষা রয়েছে ওদের মাঝে। হানিকে ভাল লাগেনি, কেন সেটা পাঠক নিজেই বুঝবেন। সবথেকে মজা লেগেছে বই এ দুই জায়গায় বাংলাদেশ এর নাম উল্লেখ করেছেন লেখক। অনুবাদ নিয়ে বলার কিছু নেই। অনীশ দাস অপুর অনুবাদ পড়লে মনে হয়না যে অনুবাদ পড়ছি। সময় কাটানোর জন্য ভাল বই। আর যারা আগে শেলডনের বই পড়েননি, তাদের অবশ্যই ভাল লাগার কথা। রেটিং : ৭.৫/১০
Thriller
1
একসময় দিনরাত গল্পের বইয়ে মুখ গুঁজে পড়ে থাকতাম। কিন্তু বর্তমানের কর্মব্যস্ত জীবনে আর আগের মত বই পড়ার সময় পায় না। দুদিন আগে আমার জন্মদিনে স্কুললাইফের একজন ঘনিষ্ঠ বন্ধু বইটা গিফট দিয়ে একেবারে হুকুম করে বসল বইটা শীঘ্রই পড়ার জন্য। পরে কোন এক সময় পড়ব ভেবেও আজ বিকেলে কি মনে করে বইটা পড়া শুরু করলাম এবং এক নিঃশ্বাসে পড়ে শেষ করে উঠলাম। বইটা শেষ না করে কিছুতেই উঠতে পারছিলাম না। খেতে বসেও মন পড়ে ছিল বইটাতে। সত্যিই এই লেখিকার ক্ষমতা আছে প্রত্যেকটা বাক্যে আকর্ষণের জাল বুনার যা পাঠককে বেঁধে রাখে বইয়ের পৃষ্ঠাতে পৃষ্ঠাতে। পাঠক হারিয়ে যায় লেখকের সৃষ্ট বইয়ের জগতে। এই গল্পের জাদুময় জগতের মত এই লেখিকার হাতেও মনে হয় আছে কোন জাদুর কলম যার অসামান্য লেখনিশক্তি পাঠককে মুগ্ধ করে রাখে। অনেক বছর পর একটা ভালো উপন্যাস পড়লাম। লেখিকার আরো দুটি উপন্যাস আগেই প্রকাশ পেয়েছে দেখলাম। সেগুলোনও পড়ার জন্য প্রবল আগ্রহ বোধ করছি। আশা করি পড়ে ফেলব খুব তাড়াতাড়ি। অবশেষে লেখিকা ইশিতা জেরিনকে সাধুবাদ জানাই আর বাংলাদেশের পাঠকগোষ্ঠীকে অভিনন্দন এরকম একজন অসাধারন সাহিত্যিকের লেখার সাথে পরিচিত হওয়ার, তাঁর লেখা পড়ার সুযোগ পাওয়ার জন্য, যার লেখা পড়ে আমি পাঠমুগ্ধ।
Fiction
0
যারা বর্তমান সাৎেযন্স ফিকশন পড়ে এবং দেখে অভ্যস্থ, তাদের কাছে এইচ. জি. ওয়েলস এর লেখা সায়েন্স ফিকশনগুলো ঠিক সায়েন্স ফিকশন মনে হবে না। টাইম মেশিন পড়বার সময় পাঠক যদি চিন্তা করেন, কোন সময়ে বসে ওয়েলস এই বইটি তিনি লিখেছেন, সেই সমযকার বিজ্ঞান এর অঘ্রগতি কি ছিল, তা হলে হয়ত তারা এর কেবলমাত্র সায়েন্স অংশটুকুকে সমালোচনা করার বদলে একই সাথে ফিকশন অংশটিকেও উপভোগ করতে পারবেন। সায়েন্স ফিকশন এর এই এক সমস্যা... আজ যেটা অসাধারণ আধুনিক ধারনা, কাল সকাল হতেই সেটা যে পুরনো কোন ধারনায় পরিণত হবে না, এই গ্যারন্টি স্বয়ং লেখকও দিতে পারবেন না। আর তাই, বইটি লেখার সময়ে যে অসাধারণ সাড়া জাগিয়েছিল, এখনকার পাঠকের মনে তা হয়ত তৈরি করতে পারবে না। তবে গল্পটি ভাল, সুতরাং পড়ে দেখলে সময় নষ্ট হবে না। এছাড়া এটি একট ওয়ার্ল্ড ক্লাসিক।
Science-Fiction
4
প্রথম প্রশ্ন- আপনি কি বাচ্চাকাচ্চা অপছন্দ করেন? তাদের কৌতুহলী প্রশ্নে বিরক্ত বোধ করেন? দ্বিতীয় প্রশ্ন - ছোটদের কাজকে আপনার অযৌক্তিক বলে মনে হয়? অল্প বয়সেই বেশি বুদ্ধিমান বাচ্চাকে ইঁচড়েপাকা বলে মনে হয়?তবে প্লিজ আপনি এই বই পড়বেন না। বইটি আপনার জন্য না। আপনি বরং আপনার বুড়ো মন আর রাশভারী মেজাজ নিয়েই থাকুন আর এদিকে আমরা "বাবাকোয়া" দের পৃথিবীতে উঁকি দিয়ে আসি। ছোট্ট বাবাই। বয়স যার মাত্র ৫ বছর, সে নিজেকে সবার কাছে "ক্যাপ্টেন বাবাকোয়া" হিসেবে পরিচয় দিতেই বেশি পছন্দ করে। প্রতিদিন বাবাকোয়া কোন না কোন এডভেঞ্চার মিশন সম্পন্ন করে থাকে। অবশ্য এসব মিশনের মাঝে স্টোর রুমের ইঁদুর গুলিকে দেখাশোনার পর্বও আছে! না, এতে হাসির কিছু নেই। বাবাকোয়া সকল জীবের প্রতি খুবই সহানুভূতিশীল! শুধু এসব মিশনে অংশ নিয়েই সে থেমে থাকেনা। তার সমস্ত মিশন এর পূর্ণাঙ্গ বিবরণ এবং পরবর্তী মিশন এর কর্মশালা সে কাগজে লিপিবদ্ধ করে থাকে। তার ব্যক্তিগত ডায়েরীর উপরে বড় বড় করে লিখা " ক্যাপ্টেন বাবাকোয়ার গোপন মিশনসমূহ"! যদিও বাবাই এসব এডভেঞ্জার রূপী কর্মকান্ড তার মা নভেরা দু'চোক্ষে দেখতে পারেননা এবং সুযোগ পেলেই বাবাইকে ধোলাই দিতেও পিছপা করেন না, তবুও বাবাই থেমে থাকেনা! দুর্বার গতিতে সে এগিয়ে চলে তার মিশনে! তাকে কিছুটা সাহায্য করে খালামণি মিথিলা। এবং বাবা জাহিদ উৎসাহ এবং পরামর্শ দিয়ে সব সময় পাশে থাকে বাবাইয়ের। "ক্যাপ্টেন বাবাকোয়া" বইটি বাবাইয়ের অতি মজাদার সব ঘটনার নথিপত্র। যেখানে প্রতিটি গল্প অদ্ভুত, সেই সাথে হাস্যকর কিন্তু শিক্ষামূলক। কৈশোরে জাফর ইকবাল এর স্যার কিশোর উপন্যাস পড়ার দীর্ঘদিন পর আবার বাচ্চাদের এত চমৎকার এই বইটি পড়লাম। আমার ধারণা বাচ্চাদের পছন্দ করেন না এমন মানুষ হাতে গোণা। পছন্দের মাত্রা কমবেশি হতে পারে। কেও অতিরিক্ত পছন্দ করে,কেওবা কম। কিন্তু একেবারেই পছন্দ করেনা এমন মানুষ সংখ্যায় নগণ্য। এক শিশুর মুখের হাসি দেখে অতি পাষাণের মন টাও গলে যাবে এটাই প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়ম। যদিও এই যুগে এসে কচি বাচ্চারাও বিকৃত মানুষের বর্বরতা থেকে রেহাই পাচ্ছেনা! এরা মানুষ রূপী জানোয়ার। এদের হিসেব আলাদা। ব্যক্তিগত ভাবে আমি বাচ্চাদের খুব পছন্দ করি। অতিরিক্ত পছন্দ! এজন্যেই আমি যখন কাহিনী গুলি পড়ি তখন বারবার এটাই মনে হচ্ছিলো, ইস্! বাবাই কেন আমার ছেলে না! এমনকি সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমার ছেলে বা মেয়েকে বাবাইয়ের মতো নীল হেলমেট পরিয়ে রাখবো সব সময়। সে গম্ভীর মুখে আমার পুরো বাড়িতে হেলমেট মাথায় ঘুরাঘুরি করবে, এই দৃশ্য ভাবতেই এক অন্যরকম অনুভূতি হয়। লেখক এর সাথে আমার পরিচয় হয়েছিলো "অমিয়েন্দ্র" বইটি পড়ার মাধ্যমে। তখনি মুগ্ধতা এসেছিলো। "ক্যাপ্টেন বাবাকোয়া"তে এসে লেখকের আলাদা এক লিখনীর সাথে পরিচয় হলো। আমার মনে হয় বাচ্চাদের বই লিখা অনেক কঠিন। কারণ এজন্য আপনাকে একটি বাচ্চার মতো করে চিন্তাভাবনা করতে হবে। জীবনের স্রোতে ভেসে শৈশবকে পেছনে ফেলে বাস্তবতার স্পর্শে পুড়ে খাক হবার এই বয়সে এসে একটি নিষ্পাপ বাচ্চার চোখে সব কিছু দেখা চাট্টিখানি কথা নয়। আর যদি বাচ্চাদের নিয়ে লিখা বইটি বড়দের কেও সমান ভাবে আনন্দ দিতে পারে,তবে বুঝতে হবে লেখক সার্থক। ফরহাদ ভাই এক্ষেত্রে সফল পুরোপুরি তা আর বলার অপেক্ষা রাখেনা। লেখক এর জন্য শুভকামনা রইলো। ক্যাপ্টেন বাবাকোয়া বইটির প্রচ্ছদ দেখেই আমি মূলত বইটির প্রতি আগ্রহী হই। দারুণ এক প্রচ্ছদ! দেখতেই শান্তি শান্তি লাগে। বেশ কিছু বানান ভুল ছিলো,প্রিন্টিং মিসটেক। আর যেটা খারাপ লেগেছে তা হলো, সংলাপে লেখ্য আর কথ্য ভাষার সংমিশ্রন। এক জায়গায় বাবাই বলছে,"খাইছি" তো আরেক জায়গায় বলছে "খেয়েছি"। যেকোন একটা বজায় রাখলেই বেশি ভালো লাগতো।বাবাকোয়াদের জন্যেই আসলে পৃথিবীটা সুন্দর। হাফধরা প্রাপ্তবয়স্ক মনের আড়ালেই শিশু মনকে বাবাকোয়ারা নাড়া দিতে পারে। আপনাকে ফিরিয়ে নিয়ে যায় শৈশবের স্মৃতিময় সেইসব ছেলেমানুষির দিনগুলিতে। নিজেই অজান্তেই ঠোটের কোণে ফুটে উঠবে হাসি।সবশেষে বলবো, বাবাইরা ভালো থাকুক,সুস্থ থাকুক। পৃথিবীর, সমাজের নোংরামির কবল থেকে বাবাইরা মুক্ত থাকুক। আর আমরাও যেন বাবাইদের স্পর্শে কিছুটা পবিত্র হওয়ার সুযোগ পাই। ভালবাসা তাদের জন্য।
Childrens-Book
2
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বই: দ্য বুক অব ফ্যাক্টস ১ লেখক: আইজ্যাক আজিমভ অনুবাদ: হাসান খুরশীদ রুমী প্রকাশনা: ঐতিহ্য মূল্য:২০০৳ দ্যা বুক অব ফ্যাক্টস 1 গ্রাণ্ড মাস্টার অব দ্য সায়েন্স ফিকশন আইজ্যাক আসিমভের এক অনন্য সৃষ্টি দ্য বুক অব ফ্যাক্টস। এবইকে একক ভাবে দেখকে মনে হয় এটা সাধারণ জ্ঞানের বই। কিন্তু এটা এমন এক বই যা পড়লে তৃপ্তিতে মন ভরে যেতে বাধ্য। রিভিউ: প্রথমে এই বইয়ের সূচিপত্র: রাজাদের কাহিনী রাণিদের কাহিনী ধনরত্নের কাহিনী আমেরিকান বিপ্লব আমেরিকান ইণ্ডিয়ান প্রাচীন সভ্যতা প্রাণীদের জগৎ দান শিল্পকলা মোদ্দাকথা বিপর্যয় বাচ্চাকাচ্চা শহরের কাহিনী ঠাণ্ডা বিষয়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা যৌগিক ও মৌলিক গা শিরশিরে খানাপিনা আবিষ্কার খামখেয়ালী পনা শক্তি অভিযান ফ্যাশন পাখ-পাখালি।। সুচিপত্র যত মজার। ভিতরের তথ্য তার চেয়ে ও বেশি মজার। যেমন: আপনি কী জানতেন প্রথম বিশ্বযুদ্ধে আকাশ ভ্রমণে পাখির ভূমিকা ছিল? তীব্র শ্রবণ শক্তির কারণে আইফেল টাওয়ারে তোতা পোষা হত। যাতে করে প্লেনের আওয়াজ সে মানুষ শুনার আগেই মানুষকে দিতে পারে। এখান থেকে আপনি জানবেন, নিষেক/সঙ্গম হবার পরেও স্ত্রী কবুতর ডিম পারতে পারে না।ডিম্বাশয় কাজ করার জন্য তাকে আর একটা কবুতর দেখতে হবে। অন্য কোনো কবুতর পাওয়া না গেলে বাসায় আয়নার প্রতিচ্ছবিই যথেষ্ট ডিম পারার জন্য। পাঠক এখান থেকে জানতে পারবে, পিয়েরে এবং মেরি কুরী রেডিয়াম (একধরনের ভারী তেজস্ক্রিয় ধাতু) তৈরী পদ্ধতির পেটেন্ট নিতে অস্বীকৃতি জানান, কারণ তারা মনে করতেন, রেডিয়াম প্রকৃতির সম্পদ। এর থেকে লাভ করার কোনো অধিকার তাদের নেই। এ ছাড়াও আরো হাজারের অধিক তথ্যে এ বই ভরপুর, যা পড়তে গিয়ে পাঠকের কখনো ক্লান্তি আসবে না পাঠপ্রতিক্রিয়া: এ অসাধারণ বইটি পাঠকের জ্ঞানকে সমৃদ্ধ করতে দৃঢ়তর ভূমিকা রাখবে। আমার কাছে এর রেটিং 4/5
Childrens-Book
2
বর্তমান সময়ের অন্যতম জনপ্রিয় লেখক আসিফ মেহ্দী।তাঁর প্রকাশিত সায়েন্স ফিকশন বই দুইটি।ফ্রিয়ন তাঁর প্রকাশিত প্রথম সায়েন্স ফিকশন।বইটি মূলত তিনটি সায়েন্স ফিকশন গল্পের সমন্বয়।গল্প ৩টি হল-ভয়ংকর অনুনাদ,বিজ্ঞানী গারাদের ত্রাসের জগৎ এবং ফ্রিয়ন।৩টি গল্প তিন স্বাদের।ভিন্ন ভিন্ন মজার কাহিনীর। প্রথম গল্পটির নাম ভয়ংকর অনুনাদ। এ গল্পের মূল প্রতিপাদ্য হল বিজ্ঞানের অতি সাধারণ একটি ঘটনা-অনুনাদ।অথচ এই অতি সাধারণ ঘটনাটাই কতটা অসাধারণ আর অস্বাভাবিক অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটাতে পারে সেটাই গল্প বলার ছলে এই গল্পে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে।চট্টগ্রামের একটি পাহাড় ঘেরা অভিজাত এলাকা খুলশী।কাহিনীর কেন্দ্রস্থল এই খুলশীই।গল্পের মূল নায়ক ধ্রুব।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ভূ-তত্ত্ববিদ্যায় মাস্টার্স করেছে সে।সবসময় পৃথিবীর নানা রকম জিনিস নিয়ে চিন্তা ভাবনা করে সে।গবেষণায় প্রচুর আগ্রহ।সে ভালবাসে তূবা নামের একটি মেয়েকে।তূবাও তাকে ভীষণরকম ভালবাসে।কিন্তু এই ভালবাসার কথা কারোওএকে অন্যকে বলা হয়নি। ধ্রুব তূবাকে ভালবাসলেও তাঁর কেন যেন এই ভালবাসার প্রতি ততটা মনোযোগ নেই।সে শুধু তার অবচেতন মনে অনুভব করে যে সে তূবাকে ভীষণ ভালবাসে।অনেকটা পাগল গোছের এই ছেলেটাই তার নিরন্তর গবেষণা দিয়ে আবিষ্কার করেছে এক ভয়াবহ যন্ত্র।সে যন্ত্রের এক ভয়াবহ প্রয়োগে সারা দেশবিচলিত।ঘটে গেছে এক ভয়াবহ ভূমিকম্প।যার কারণ উদঘাটনে চ্যানেলে চ্যানেলে টকশো,নানাবিধ তর্ক বিতর্ক।কিন্তু আসল কারণ কারও জানা নেই।কারও জানা নেই সাধারণের মাঝে মিশে থাকা এক অসাধারণ তরুণের কথা,তার অনন্য সাধারণ এক আবিস্কারের কথা।গল্পের আরও একটি অংক –তূবা আর ধ্রুব'রপ্রেমের রসায়ন।তাদের অব্যক্ত প্রেমের গল্প আর প্রেমের নায়ক-নায়িকার এক অসাধারণ আবিষ্কার আর কীর্তির এবং বিজ্ঞানের এক বিস্ময়কর বিষয় অনুনাদের নানাদিক নিয়ে এগিয়ে গেছে ভয়ংকর অনুনাদ গল্পের কাহিনী। গল্পের সাথে রয়ে যাবে তাই পাঠকের রোমাঞ্চও! দ্বিতীয় বিজ্ঞান কল্পকাহিনী মূলক গল্পটির নাম ফ্রিয়ন। গল্পটি একটি গ্রহ কে নিয়ে। শান্ত আর নিরিবিলি একটি গ্রহ। সবুজে ভরা সুশীতল গ্রহটি যেন নিরব থাকা এক আপাদমস্তক দগ্ধ মানুষের প্রতিচ্ছবি। যার নিজের মুখে কোন আর্তচিৎকার নেই। কিন্তু তার পুরোটা শরীর প্রতিনিয়ত জ্বলে পুড়ে শেষ হয়ে যাচ্ছে। এই গ্রহটিও তাই। গ্রহের মানুষগুলো গারাদ নামের একজন বিজ্ঞানীর হাতের কব্জায়। তারা মারাত্মক রকম পরাধীনতা নিয়ে জীবনযাপন করে। কিন্তু সেই পরাধীনতার বিরুদ্ধে প্রতিবাদের চিন্তা করার অধিকারটুকুও তাদের দেওয়া হয়নি। তবে তাদের আশার আলো নিভে যায়নি। তাদের মানুষের মত বেঁচে থাকার অধিকার অর্জনের জন্য নীরবেই জীবনের ঝুঁকি নিয়ে লড়াই চালিয়ে যাচ্ছে একদল মহৎ মনের মানুষ। এই ভালো খারাপের ভয়াবহ এক যুদ্ধের গল্পের নামই ফ্রিয়ন। তৃতীয় সায়েন্স ফিকশন গল্পটি বইটির নাম গল্প। গল্পের বিষয়বস্তু জারিফ নামের এক ছেলেকে কেন্দ্র করে। সাথে আছে এগিয়ে যাওয়া পৃথিবীর ভয়াবহ কিছু সমস্যা। আছে জারিফের বোনের আজব এক রোগ যা তাকে ধীরে ধীরে মৃত্যুর দিকে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছে। মহাজাগতিক এসব সমস্যার সমাধান কিভাবে হল জারিফ আর ভিনগ্রহের কিছু প্রাণীকে সাথে নিয়ে তারই এক সুন্দর গল্প ফ্রিয়ন। পরিশেষে বলা যায়, গল্প ৩টি পাঠককে সত্যিকার অর্থেই এক অন্যরকম সায়েন্স ফিকশনের জগতে নিয়ে যাবে।
Science-Fiction
4
মাঝে মাঝেই বইটা স্টক আউট হয়ে যায়। প্রকাশনী থেকেও ছাপা কপি শেষ হয়ে যায় প্রায়ই। তারপর আবার রিপ্রিন্ট দিতে হয়। এভাবেই চলছে ২০১৭ সাল থেকে। খুব স্বাভাবিকভাবেই প্রিয় নেতার লেখা বইটি সবসময়ই বেস্টসেলার লিস্টের প্রথমদিকে থাকে। কারণ জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে নিয়ে আগ্রহ তাঁর জীবন নিয়ে জানার আগ্রহ বাঙালীর সারাজীবন থাকবে। আর সেই জায়গা থেকেই আপনার আমার আমাদের সবার পড়া উচিত কারাগারের রোজনামচা বইটি। যেখানে শুধু নেতা শেখ মুজিব নয় আছেন ব্যক্তি শেখ মুজিবের কথা, আছে জেল জীবনের কথা, জীবন সংগ্রামের কথা... বইটি আজই কিনে পড়ে ফেলুন,অন্যদের গিফট করুন।
Political
3
বুক রিভিউ- "রিচার্জ Your ডাউন ব্যাটারি" -ঝংকার মাহবুব বইটা হাতে পেয়ে অনেক ভাল লাগলো। আমার ব্যাটারি একদম Low বললেই চলে। একদিকে সামনে আবার পরিক্ষা! মহাঝামেলায়। কিন্তু তাতে কি? যদি পাশে থাকে আলোচ্য গল্পে মাসুম ভাইয়ার মতো Guideline! যেমনিভাবে তিনি আলোচ্য গল্পের ছাত্র আবিরকে টিপ্স্ দিচ্ছিলেন- কিভাবে পড়ালেখায় খাপ খাওয়াতে হয়, কিভাবে জীবনে উন্নতি করতে হয়, কিভাবে হতাশার করিডোর থেকে বের হতে হয় আর কিভাবে সাফল্যের চূড়ায় আরোহন করতে হয়। এমন একটা Guideline আমারও দরকার ছিল, যা আমি ফেলাম আমার প্রিয় ব্যক্তিত্ব- ঝংকার মাহবুবের কাছ থেকে। পরিক্ষার আগে আমার মাঝে কিছু জিনিসের অভাব ছিল, বিশেষ করে কন্ফিডেন্সের অভাব ছিল। কিন্তু এই বইটি যেন আমার হয়ে কথা বলছে, বইটি যেন বলছে- তোমাকে উন্নতি করতে হলে আরো চেঞ্জ হতে হবে, একবার না পারিলে দেখ শতবার। বইটিতে আরো বেশী ভাল লেগেছে- লেখকের "তুই" শব্দের সম্বন্ধটা, যেন কোনো বড় ভাই আমাকে উপদেশ দিচ্ছে। সবশেষে বইটি আমার জন্য এ বছরের অন্যতম সেরা উপহার।
Motivational
6
স্যার এর এই বই মাস্টারপিস।বাড়ির নাম আতর বাড়ি। বাড়ির মালিক মবিন সাহেব কাজ থেকে অবসর নিয়েছেন।তার টাকাপয়সার হিসাব রাখার জন্য চারজন চার্টার্ড একাউন্টস আছে। বাড়িতে কর্মচারী নিয়ে তিনি একাই থাকেন। তার আগের ম্যানেজার গুরুতর অপরাধ করেছেন বলে তাকে চাকরি থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। অবশ্য সে যদি ৫০ হাজার বার কানে ধরে উঠবস করতে পারে তাহলে চাকরিতে পুনরায় বহাল করা হবে। এই সমস্ত জায়গায় লেখক বিশেষ হিউমারের চিহ্ন রেখে গেছেন। শফিক এই বাড়িতে চাকরিতে জয়েন করেছে। বেতন ভাল, কিন্তু কাজটা কি সেটা সে এখনও জানেনা। চাকরিতে জয়েন করার কিছুদিনের মধ্যেই তাকে একটা মোবাইল এবং সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য একটা গাড়ি দেয়া হয়। তার কয়দিন পর চার বেডরুমের একটা ফ্ল্যাটও দেয়া হয়। এতকিছু পেয়েও শফিক কেন জানি মবিন সাহেবকে পছন্দ করে না। যদিও সেটা সে প্রকাশ করেনা।সাধারন নিয়মে মালিককে বলা সাজে না। কিন্তু হয়ত মালিক বুঝতে পারে। মবিন সাহেব একবার বিয়ে করেছিলেন ৭ ঘন্টার জন্য। রাত ১ টা ১০ এ বিয়ে হয়, সকাল ৮ টা ১০ এ তালাক হয়ে যায়। সেই মেয়ের আবার অন্যত্র বিয়ে হয়, একটা মেয়েও হয়। মবিন সাহেবের ধারনা মেয়েটা তার। মবিন সাহেব এখনও সেই মহিলার খোঁজখবর রাখেন। এটা সেটা পাঠান। শফিকের কাজ হলো, সেই মহিলার সাথে যোগাযোগ রাখা। মবিন সাহেব কিছু পাঠাতে চাইলেও শফিকের হাতে পাঠান। এসবের সাথে শফিকের বাবাও যুক্ত হয়ে যান। বেশ ভাল লেগেছে। পড়ে দেখতে পারেন
Fiction
0
বনি গল্পের শুরু হয় আমেরিকা প্রবাসী এক বাঙালি দম্পতিকে নিয়ে।একদিন তারা গাড়ি নিয়ে যাওয়ার সময় এক ভয়াবহ দুর্ঘটনায় পড়ে কিন্তু তারপর ও বিস্ময়কর ভাবে তাদের কোনো কিছুই হয় না। এর কিছুদিন পড়ে তাদের ছেলে বনি জন্ম নেয়। কিন্তু সে আর দশটি ছেলের মত নয়,মগজ আর চোখ বাদে শরীরের প্রায় পুরো পার্ট অসার। তাই নিউরো সার্জন ডক্টর ক্রিল তার মস্তিস্কের পরীক্ষা করতে যায় কিন্তু তিনি এক অদ্ভুত চক্রের বাধা পান। এদিকে কলকাতার এক শখের বৈজ্ঞানিক এর বাসায়ও অদ্ভুত কর্মকান্ড শুরু হয়। সারা এলাকায় লোড শেডিং হোলেও তার বাসায় কারেন্ট থাকে ,সাদা - কালো টিভি রঙিন ছবি দেখানো শুরু করে তাতে আবার আমেরিকার এনবিসি এর খবর(!)যাতে বনির খবর দেখায় কারণ ততদিনে বনি কিছু অতিপ্রাকিতিক ক্ষমতা দেখানো শুরু করেছে।তার সাথে এক চিনা বৈজ্ঞানিক এর খবর ও দেখায় যে তার এক মুল্যবান আবিষ্কার হারিয়েছে।এখন বনির সাথে চিনা বৈজ্ঞানিক এর সম্পর্ক আর এই দুই ঘটনার সাথে কলকাতার ঘটনার কি সম্পর্ক তা জানতে পড়তে হবে "বনি" . -------------------------------------------------------------------------------- Rating:8/10 (শীর্ষেন্দু মুখোপাধ্যায় এর অদ্ভুতুরে সিরিজ মূলত পড়ি কমিক রিলিফ এর জন্য।সাধারণত এই সিরিজ এর গল্পের পটভূমি হয় গ্রামে। সেখানে থাকে নানা রকমের অদ্ভুত মানুষ আর বিভিন্ন রকমের ভুত প্রেত আর গুপ্তধন।বেশির ভাগ সময় ই হাসি তামাসা দিয়ে গল্প শুরু হয় আর এই ভাবেই চলতে থাকে। বনি ও এই রকম কোনো গল্প ভেবে শুরু করেছিলাম। কিন্তু দুই পেজ পড়তেই বোঝা যায় অদ্ভুতুরে সিরিজ এর আড়ালে এটি একটি সাই-ফাই থ্রিলার ! যেখানে সবগুলো অতি প্রাকিতিক ঘটনার ব্যাখা দেয়ার চেষ্টা হয়েছে যা অন্য গল্প গুলোতে পাওয়াই যায় না। তবে নেগেটিভ দিক বলতে চিনা বৈজ্ঞানিক এর কর্মকান্ড একটু ঘোলাটে লেগেছে। এটি বাদে রহস্য, কল্প বিজ্ঞান আর অদ্ভুত ঘটনার মিশেলে " বনি " আমার পড়া এখন পর্যন্ত অদ্ভুতুরে সিরিজ এর সেরা বই !
Science-Fiction
4
সাহিত্যিক, সাংবাদিক এবং রাজনীতিবিদ হিসেবে সমান ভাবে সফল ছিলেন আবুল মনসুর আহমদ। 'আমার দেখা রাজনীতির পঞ্চাশ বছর' বইটি তার রাজনৈতিক জীবনীগ্রন্থ। ১৮৯৮ সালে জন্ম নেওয়া আবুল মনসুর আহমদ ১৯২০ এর দশক থেকে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন এই ভূখণ্ডের রাজনীতিতে। ১৯৫৪ সালের নির্বাচনে যুক্তফ্রন্টের ২১ দফা তার একটি অনবদ্য কাজ। ছিলেন এ. কে ফজলুল হক, হোসেন শহীদ সোহরাওয়ার্দীর আস্থাভাজন। কাজ করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সাথে। কাজ করেছেন পাকিস্তানের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী হিসেবে। কিছু সময়ের জন্য পাকিস্তানের ভারপ্রাপ্ত প্রধানমন্ত্রী হিসেবেও দায়িত্ব পালন। করেন। ১৯২০ থেকে পরবর্তী পঞ্চাশ বছর এই ভূখণ্ডের রাজনীতি এবং আবুল মনসুর আহমদ এর রাজনৈতিক জীবন জানতে বইটি পড়ে ফেলা যায়।
Political
3
আব্দুল মতিন (জন্ম: ৩ ডিসেম্বর, ১৯২৬- মৃত্যু: অক্টোবর ৮, ২০১৪[১]) ১৯৫২ সালের বাংলা ভাষা আন্দোলনের অন্যতম ভাষা সৈনিক। ২০০১ সালে তিনি বাংলাদেশের জাতীয় এবং সর্বোচ্চ বেসামরিক পুরস্কার একুশে পদক পান।আব্দুল মতিন ১৯২৬ সালের ৩ ডিসেম্বর সিরাজগঞ্জের চৌহালি উপজেলার ধুবালীয়া গ্রামে এক মধ্যবিত্ত কৃষক পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর বাবার নাম আব্দুল জলিল এবং মায়ের নাম আমেনা খাতুন। তিনি ছিলেন তাদের প্রথম সন্তান। জন্মের পর তাঁর ডাক নাম ছিল গেদু। ১৯৩০ সালে গ্রামের বাড়ী যমুনা ভাঙনে ভেঙ্গে গেলে আবদুল জলিল জীবিকার সন্ধানে ভারতের দার্জিলিং এ চলে যান। সেখানে জালাপাহারের ক্যান্টনমেন্টে সুপারভাইস স্টাফ হিসেবে একটি চাকরি পেয়ে যান। ১৯৩২ সালে আব্দুল মতিন শিশু শ্রেণীতে দার্জিলিং-এর বাংলা মিডিয়াম স্কুল মহারাণী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষা দিলেন এবং তখন সেখানেই তাঁর শিক্ষা জীবনের শুরু। ১৯৩৩ সালে আব্দুল মতিনের মাত্র ৮ বছর বয়সে তার মা অ্যাকলেমশিয়া রোগে মারা যান। মহারানী গার্লস স্কুলে ৪র্থ শ্রেণী পাশ করলে এখানে প্রাইমারি স্তরের পড়াশোনার শেষ হয়। এরপর ১৯৩৬ সালে দার্জিলিং গভর্মেন্ট হাই স্কুলে পঞ্চম শ্রেণীতে ভর্তি হন। তিনি ১৯৪৩ সালে এনট্রেন্স (মাধ্যমিক সার্টিফিকেট পরীক্ষা) পরীক্ষায় ৩য় বিভাগ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। আব্দুল মতিন ১৯৪৩ সালে রাজশাহী গভর্মেন্ট কলেজে ইন্টারমিডিয়েট প্রথম বর্ষে ভর্তি হলেন। ২ বছর পর ১৯৪৫ সালে তিনি এইচ এস সি পরীক্ষায় তৃতীয় বিভাগ নিয়ে উত্তীর্ণ হন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষের দিকে আব্দুল মতিন ব্রিটিশ আর্মির কমিশন র‌্যাঙ্কে ভর্তি পরীক্ষা দেন। দৈহিক আকৃতি, উচ্চতা, আত্মবিশ্বাস আর সাহসিকতার বলে তিনি ফোর্ট উইলিয়াম থেকে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে কমিশন পান। এরপর তিনি কলকাতা থেকে ব্যাঙ্গালোর গিয়ে পৌঁছান। কিন্তু ততদিনে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি ঘটে। ফলে তিনি একটি সার্টিফিকেট নিয়ে আবার দেশে ফিরে আসেন। দেশে প্রত্যাবর্তনের পর তিনি ১৯৪৫ সালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ব্যাচেলর অব আর্টসে (পাস কোর্স) ভর্তি হলেন। ফজলুল হক হলে তাঁর সিট হয়। ১৯৪৭ সালে গ্র্যাজুয়েশন কোর্স শেষ করেন এবং পরে মাস্টার্স করেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ থেকে।[৩] কর্মজীবন ও রাজনৈতিক জীবন[সম্পাদনা] ১৯৫২ সালে বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবি তোলায় আব্দুল মতিনের অবদান অন্যতম।[৩] সেবছর ২১ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কলাভবনের ছাত্রসভায় সভাপতিত্ব করেছিলেন তিনি। শিক্ষার্থীদের সংগঠন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় রাষ্ট্রভাষা সংগ্রাম কমিটির আহ্বায়ক ছিলেন তিনি। তাঁর সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত ওই কলাভবনের জনসভায় সিদ্ধান্ত নেয়া হয় ১৪৪ ধারা ভঙ্গের। [৪] তাঁরই নেতৃত্বে একুশে ফেব্রুয়ারি বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা করার দাবিতে সারা বাংলার জন্য আন্দোলনের নানা কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়। ভাষা আন্দোলনের পর তিনি ছাত্র ইউনিয়ন গঠনে ভূমিকা রাখেন এবং পরে সংগঠনটির সভাপতি হন। এরপর কমিউনিস্ট আন্দোলনে সক্রিয় হন। ১৯৫৪ সালে পাবনা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সম্পাদক হন আব্দুল মতিন। মওলানা ভাসানী ন্যাপ গঠন করলে তিনি ১৯৫৭ সালে তাতে যোগ দেন।[৫] ১৯৬৮ সালে তিনি পাবনা জেলাকে ভিত্তি করে পূর্ব পাকিস্তান কমিউনিস্ট পার্টি (এমএল)-এর ভেতরে আলাউদ্দিন আহমদকে নিয়ে এক উপদল গড়ে তোলেন। পরে তিনি দেবেন শিকদার, আবুল বাশার, আলাউদ্দিন আহমদ ও নুরুল হক চৌধুরীর সহায়তায় পূর্ব বাংলার কমিউনিস্ট পার্টি গঠন করেন। টিপু বিশ্বাস, আলাউদ্দিন আহমদ ও তাঁর নেতৃত্বে পাবনা জেলার জনগণ মুক্তিযুদ্ধে সাহসী ভূমিকা পালন করেন।[৬] চীনকে অনুসরণকারী বামপন্থি দলগুলোর নানা বিভাজনের মধ্যেও আবদুল মতিন সক্রিয় ছিলেন রাজনীতিতে। ১৯৯২ সালে তিনি বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি গঠনে সক্রিয় ভূমিকা রাখেন। ২০০৬ সালে ওয়ার্কার্স পার্টি থেকে তিনি পদত্যাগ করেন। পরবর্তীকালে ২০০৯ সালে হায়দার আকবর খান রনোর নেতৃত্বে ওয়ার্কার্স পার্টি (পুনর্গঠন) গঠিত হলে আবদুল মতিন তাদের সঙ্গে যোগ দেন।[৫] পরবর্তীতে ২০১৩ সালে বাংলাদেশের ওয়ার্কার্স পার্টি (পুনর্গঠিত) ও বাংলাদেশের কমিউনিস্ট লীগ ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগ গঠিত হয় এবং আবদুল মতিন নবগঠিত বাংলাদেশের ইউনাইটেড কমিউনিস্ট লীগের সাথে ঐক্যবদ্ধ হন। তিনি এই পার্টির কেন্দ্রীয় উপদেষ্টামণ্ডলীর অন্যতম সদস্য মনোনীত হন এবং আমৃত্যু তিনি এই পদে আসীন ছিলেন।[৭]
Political
3
রবোট নিয়ে যে কীসব চমৎকার গল্প হতে পারে তা বিশ্বজিৎ দাসের লেখা রবু নামের রোবটটি না পড়লে আপনার ভাবনা অসম্পূর্নই থেকে যাবে। ৭টি গল্পের চমৎকার সমাহার রবু নামের রোবটটি। প্রতিটি গল্পই স্বতন্ত্রতায় ভিন্ন। মূলত সায়েন্স
Science-Fiction
4
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা বই- দ্য বেষ্ট লেইড প্ল্যানস। লেখক- সিডনী শেলডন। অনুবাদ- অনীশ দাস অপু। ধরন- থ্রিলার, রোমান্টিক। পৃষ্ঠা- ২০৮। প্রকাশনী- অনিন্দ্য প্রধান চরিত্র- লেসলি ষ্টুর্য়াট, অলিভার রাসেল, ডানা ইভান্স, সিনেটর টড ডেভিস, পিটার ট্রেগার। পুরুষটি চায় ক্ষমতা……নারীটি চায় প্রতিশোধ…….. কেনটাকির লেক্সিংটন বেইলি এন্ড টমকিন্স ফার্মে একটি ভালো পদে চাকরি করে লেসলি ষ্টুর্য়াট। তার পদবী রিলেশন এন্ড অ্যাডর্ভাটাইজিং এক্সিকিউটিভ। তার গুনের মধ্যে হচ্ছে সে অসম্ভব সুন্দরী, উচ্চ শিক্ষিতা এবং ক্ষুরধার বুদ্ধির অধিকারিনী। একদিন তাদের ফার্মের অফিসে আসে কেনটাকির গভর্নর পদপ্রার্থী অলিভার রাসেল। অলিভার রাসেল দেখতে খুবই সুদর্শন, স্মার্ট, একজন আইনজীবি ও বুদ্ধিমান। মানুষের সাথে দ্রুত মিশে যাবার ক্ষমতা তার আছে। অলিভার রাসেল চান তার গর্ভণর পদে প্রচারণার জন্য লেসলির প্রতিষ্ঠানের সহায়তা। তাকে এক দেখাতেই লেসলির ভালো লেগে যায়। যদিও রাসেলের নামে অনেক নারীর সাথে জড়ানোর গুজব আছে। জানা যায় এক অজ্ঞাত উৎস থেকে এতোদিন রাসেলের প্রচারণার খরচ আসছিলো। কোনো কারণে তারা ওর থেকে মুখ ফিরিয়ে নেওয়ায় ও প্রচারণায় সুবিধা করতে পারছেনা। কিন্তু লেসলি দমে যায় না। একসাথে কাজ করে যাবার ফলে দ্রুতই তাদের মধ্যে ঘনিষ্টতা জন্ম নেয়। তা থেকে প্রেম এবং তারা বিয়ের সিদ্ধান্ত নেয়। কিন্তু হঠাৎ লেসলি জানতে পারে প্যারিসে একটি মিথ্যে কাজের বাহানা দিয়ে রাসেল অন্য আরেকজনকে বিয়ে করে বসেছে। সে মেয়ের নাম জ্যান, সিনেটর টড ডেভিসের একমাত্র মেয়ে। ঘটনার প্রতিক্রিয়ায় মনটাই মরে যায় লেসলির। সিনেটর ডেভিস নিজে দেখা করেন লেসলির সাথে এবং বিষয়টার জন্য ক্ষমা চান। পাশাপাশি সাহায্যের প্রতিশ্রুতিও দেন। এদিকে ফর্মে ফিরে আসে রাসেল এবং খুব দ্রুতই সে কেনটাকির গর্ভণর হয়ে যায়। ক্ষুদ্ধ লেসলি হয়ে ওঠে প্রতিশোধ পরায়ণ। হেনরি নামক এক বয়স্ক ধনী লোককে বিয়ে করে লেসলি। বছর দুয়েক পর হেনরি মারা যায় এবং হেনরির সমস্ত সম্পত্তির মালিক হন লেসলি। লেসলি তার সাম্রাজ্য বিস্তারে মনযোগ দেন। হেনরির একটি পত্রিকা অফিস ছিলো যা ধুকছিলো। তা দিয়ে লেসলির শুরু। সে দ্রুত তার মিডিয়া সাম্রাজ্য বাড়িয়ে চলে এবং প্রতিদ্বন্দি সমস্ত পত্রিকা ও পাশাপাশি টিভি চ্যানেল কিনে নেয়। অপরদিকে রাসেলের লক্ষ্য হয়ে দাড়ায় হোয়াইট হাউজ। সে লক্ষ্যে সে পৌছেও যায় তার শশুড় সিনেটর ডেভিসের সাহায্যে। এ কাজে তাকে বেশী সহায়তা করে পিটার টেগার। একচোখা টেগার ধার্মিক, পরিবারকেন্দ্রিক ও ক্ষুরধার রাজনিতীবিদ। তার সাহায্যে রাসেল সহযেই হয়ে যায় আমেরিকার প্রেসিডেন্ট। এবার লেসলি শুরু করে তার হামলা। হামলা করার অ্যালিবাই তার কাছে আছে। কারন প্রেসিডেন্টের আশেপাশে থাকা বেশকিছু মেয়ের মৃতদেহ বিভিন্ন স্থানে পাওয়া যায়। প্রতিটি মেয়েই প্রেসিডেন্ট রাসেলের চেনা। কেউ তার কাজ করতো, কেউ পরিচিত। এসব অ্যালিবাই নিয়ে মিডিয়ার মাধ্যমে রাসেলকে ধসিয়ে দিতে থাকে লেসলি। রাসেলের অবস্থা হয়ে পড়ে অত্যন্ত করুণ। প্রতিটি মৃতদেহে একটা কমন ব্যাপার থাকে। একটি লিকুইড তরল যার নাম একসট্যাসি। এরকম এক তরল একবার রাসেল সেধেছিলো লেসলিকে। বলেছিলো এটা খেলে বিছানায় প্রেম খুব জমে উঠে। লেসলি ড্রাগটা নিতে প্রত্যাখান করেছিলো। ও দুয়ে দুয়ে চার মিলিয়ে নেয় এবং বুঝতে পারে রাসেল কোনো না কোনোভাবে জড়িত। রাসেল সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে পড়ে যায় যখন কলোরাডো গভর্ণরের মেয়েকে একটি হোটেলের ভিআইপি রুমে মৃত পাওয়া যায় এবং তদন্তে তার সাথে হোয়াইট হাউজের এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তির আভাস পাওয়া যায়। মৃত্যুর কারণ সেই একসট্যাসি ড্রাগ। পুলিশ জেরার জন্য মেয়েটির প্রেমিককে নিয়ে আসে এবং কাষ্টেডিতে তাকে ফাসি দেওয়া অবস্থায় পাওয়া যায়। লেসলির নিয়োগকৃত সাংবাদিক যখন রহস্য সমাধানের দ্বারপ্রান্তে তখন তাকেও হত্যা করা হয়। এবার এ তদন্তে আসে দুর্ধষ সাংবাদিক ডানা ইভান্স। সে বের করে ফেলে কে এই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তি যে এতোগুলো নারীর মৃত্যুর জন্য দায়ী। কিন্তু ততোক্ষনে আতাতায়ী পৌছে গেছে ওর কাছে। ও কি পারবে বিশ্ববাসীকে জানাতে কে সেই খুনী? খুনী কি সত্যিই প্রেসিডেন্ট রাসেল? লেসলি কি রাসেলকে ধসিয়ে দিতে পারবে? সিনেটর ডেভিসেরই বা ভূমিকা কি রাসেলের পিছনে? কেনো সে রাসেলকে প্রেসিডেন্ট বানানোর জন্য এতো বিনিয়োগ করছেন? রাসেল কি তাকে অমান্য করে আরব ইসরাইল শান্তি চুক্তি বাস্তবায়ন করিয়ে দিতে পারবে? নাকি শেষ হয়ে যাবে রাসেলের প্রেসিডেন্ট ক্যারিয়ার? কে ধ্বংস করবে রাসেলকে? সিনেটর ডেভিস, লেসলি ষ্টুর্য়াট নাকি অন্যকেউ? শ্বাসরুদ্ধকর রোমান্টিক থ্রিলার। আমেরিকার রাজনিতীকে কেন্দ্র করে লেখা হয়েছে পুরো উপন্যাস। সিডনী শেলডন বুঝিয়ে দিয়েছেন কেনো তাকে মিষ্টার ব্লক বাষ্টার বলা হয়। অসম্ভব এই সুন্দর উপন্যাসে রয়েছে টানটান উত্তেজনা। বিশেষ করে শেষ মুর্হুতে এমন সব চমক থাকবে যে পাঠকের মাথা ঘুরে যাবে। কিছুতেই বোঝা যাবেনা আসলে মূল রহস্যের হোতা কে? একটার সাথে আরেকটা ঘটনার চমৎকার যোগসূত্র রয়েছে। সেই সাথে আমেরিকার রোমান্সও ফুটে উঠেছে বিশদভাবে। এসেছে মিডিয়া শক্তির বর্ণনা। এছাড়া মানবিক ব্যাপারও তিনি ফুটিয়ে তুলেছেন। অনুবাদ হিসেবেও এটা প্রথমশ্রেণীর। অনীশ দাস অপু সবসময় চমৎকার অনুবাদ করে থাকেন। এ বইতেও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। বইটা সর্ম্পকে এটাই বলা যায় যে, লেখক আপনার মন নিয়ে খেলা করবে যতোক্ষন বইটি আপনি হাতে রাখবেন। আশা করি সবার পড়তে ভালো লাগবে। রেটিং- ৫.০০/৫.০০
Thriller
1
মুহম্মদ জাফর ইকবালের কাছ থেকে এ পর্যন্ত আমরা বেশ অনেকগুলোই ভৌতিক ছোটগল্প পেয়েছি। ভূত প্রেত বা আদিভৌতিক বিষয়ের ওপর স্যারের খুব বেশি উপন্যাস না থাকলেও, বিজ্ঞান বিষয়ক এই লেখক এক সময় নিয়মিতভাবেই প্যারানরমাল নানা ঘটনার ওপর ভিত্তি করে ছোটগল্প লিখেছেন। সেরকমই ৯টি ছোটগল্প নিয়ে সাজানো হয়েছে 'পিশাচিনী' নামক স্যারের এই ভৌতিক গল্পের সংকলনটি। প্রতিটি গল্পই যে অসাধারণ, দারুণ ভয়ের এবং শিহরণ জাগানিয়া - এমন কথা বললে তা অবশ্যই অসত্য কথা হয়ে যাবে। কয়েকটি ভাল গল্পের পাশাপাশি কিছু কমজোরি গল্পের মিশেলে এই সংকলন। তবে লক্ষণীয় যে, একই প্রেক্ষাপটে বা একই ধাঁচের একাধিক গল্প একটাও নেই এই বইতে। প্রতিটি গল্পই সম্পূর্ণ ভিন্ন ধারার। একটার সাথে আরেকটার খুব কাছাকাছি কোন মিল পাওয়া যাবে না। কোন গল্পের প্রেক্ষাপট যেখানে বাংলাদেশের কোন একটা অনুন্নত গ্রাম আর কুসংস্কারাচ্ছন্ন মানুষকে ঘিরে, তেমনই কোন কোন গল্প আবার আমেরিকার মত দেশের শিক্ষিত মানুষকে কেন্দ্র করে তৈরি করেছেন লেখক। সর্বাগ্রে বলতে হয় এই বইয়ের প্রথম গল্পের কথা। পিশাচিনী, যার নামানুসারে এই বইয়েরও নামকরণ হয়েছে। পিশাচিনী সম্ভবত এই সংকলনের সেরা গল্প। মিসির আলীর কাহিনীর ফ্লেভার পাওয়া যাবে এই গল্পে। একটা সময় পর্যন্ত জাফর ইকবাল স্যার এই গল্পে লজিক আর অ্যান্টি লজিকের খেলা খেলেছেন, যেমনটা হুমায়ুন আহমেদ করেছিলেন মিসির আলীকে নিয়ে লেখা তার গল্পগুলোয়। কিন্তু হতাশার বিষয়, একটা পর্যায়ে এসে জাফর ইকবাল স্যার এই গল্পের কাহিনীকে অ্যান্টি লজিকেরই দ্বারস্থ করিয়েছেন। ফলে গল্পটা নিছকই একটা ভৌতিক কাহিনীতে আবদ্ধ থেকেছে। তারপরও স্বীকার করতেই হবে, গল্পটির প্লট বেশ শক্তিশালী ছিল। ফিনিশিংয়ে এসে চমকপ্রদ কিছু না করে লেখক ব্ল্যাক আর্টের একটি উপাদানকে উপস্থাপিত করেছেন যা এমনিতে যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক তবু যারা আরও ভাল কিছু আশা করেছিলেন তাদের জন্য কিছুটা হতাশার। 'রহমত চাচার একরাত' গল্পটিও ভাল লাগার মত, বিশেষ করে গ্রামীণ পটভূমিতে ভূতের গল্প শুনতে পছন্দ করে যারা তাদের অবশ্যই ভাল লাগবে। লাশ কাটা ঘরে রহমত চাচার ভয়ংকর অভিজ্ঞতার কথা বর্ণিত হয়েছে এখানে। গল্পে লেখক যে ঘটনার কথা বলেছেন তা কি রহমত চাচার সাথে আসলেই ঘটেছিল নাকি কেবলই ছিল এটা তার হ্যালুসিনেশন, সে সিদ্ধান্ত পাঠককেই নিতে হবে। এছাড়া এই বয়ের 'গাড়ি' গল্পটিও বেশ ভাল। সেকেন্ডহ্যান্ড একটা গাড়ির ভেতরে একটি বাচ্চা মেয়ে ঢুকলে গাড়ির পূর্বতন মালিকদের একজনের আত্মা তার ওপর ভর করে, এমনই কাহিনী গল্পের। 'নেকড়ে' গল্পটি যেমনই হোক, এর টিপিক্যাল ছোটগল্পসুলভ ফিনিশিং গল্পের একেবারে শেষে এসে পাঠককে ভয় পাইয়ে দেবে। এছাড়া বাকি যে গল্পগুলো আছে সেগুলোর কাহিনীকে খুব একটা শক্তিশালী মনে হয়নি আমার বা গল্পের কনটেন্ট ইতোমধ্যে বহুল চর্চিত বলে মনে হয়েছে। এর মধ্যে 'সুতোরান্তু' তো একদমই বোধগম্য হয়নি আমার যে এই গল্পে ভয়ের পাঞ্চটা ছিল কোথায়। 'মুতুয়াল পির' গল্পটিকে কেন যেন ছেলেমানুষি মনে হয়েছে। আর 'সহযাত্রী', 'বন্ধ ঘর' ও 'মুগাবালি' গল্প তিনটিকে এভারেজ হিসেবে ভালোর দলেই রাখব আমি। পরিশেষে বলব, ৯টি গল্পের কয়েকটি যেমন আসলেই ভয় পাওয়াবে, তেমনি কয়েকটা পড়ে পাঠক হতাশও হতে পারে। তবে মোটের উপর এই সংকলনটিকে আমি ভালোই বলব। অন্তত 'পিশাচিনী', 'রহমত আলীর একরাত', 'নেকড়ে' আর 'গাড়ি' - এই চারটি গল্পের জন্য পাঠক নিঃসঙ্কোচে বইটি হাতে তুলে নিতে পারে।
Thriller
1
জাফর ইকবাল স্যার তার এই বই এ একটি কিশোরের মনে কৈশোর কালে পরিচিত স্থান ছেড়ে অন্য স্থানে গেলে কি রকম প্রতিক্রিয়া তৈরি হয় তার এক অপূর্ব সমন্বয় ঘটিয়েছেন। নতুন বন্ধু তৈরি ছাড়াও সকলের সাথে একাত্মতা এবং দুর্যোগের সময় কিভাবে ছোট থেকেও অপরের সাহায্যে আসা যায় তা দেখিয়েছেন। গল্পের মধ্যে টেনে এনেছেন মুক্তিযুদ্ধের দিনগুলির কথা। বইটি পরে যে লাইনটি সবচেয়ে ভাল লেগেছে তা হল 'কে কি ভাবছে আমাকে নিয়ে তা নিয়ে মাথা না ঘামাতে। কারন যারা তোকে চিনে না, তারা তোকে পাগল কি ছাগল ভাবে তাতে কিছু আসা যায় না। যারা তোকে চিনে, তারা জানে তুই কতটুকু পাগল্ আর কতটুকু ছাগল।'
Childrens-Book
2
good really
Fiction
0
স্কুলপড়ুয়া কিশোর কিশোরিদের জন্য আবারো একটা কিশোর উপন্যাস উপহার দিলেন সুমন্ত আসলাম। আর এই উপন্যাসের মাধ্যমে যেই গল্পটি তিনি বলতে চেয়েছেন, তা কিশোরদের ভালোই বিনোদিত করবে। নিখাদ আনন্দের উপাদান হয়ে উঠবে। ভিন্ন ধরণের আঙ্গিক গঠনে রচিত উপন্যাস 'রোল নাম্বার শূন্য'। সাধারণত কিশোর উপন্যাসগুলোতে দেখা যায়, কয়েকটা কিশোরের জীবন বেশ ভালোভাবেই কাটছে। হঠাৎ হয়ত তারা কোন একটা সমস্যায় পড়ল। তারপর কিভাবে তারা সম্মিলিত প্রচেষ্টার মাধ্যমে সেই সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজে পেল, সেটাকে ঘিরেই আবর্তিত হয় কাহিনী। কিন্তু 'রোল নাম্বার শূন্য' সেদিক থেকে সম্পূর্ণ ব্যতিক্রম। কাহিনীর শুরুই হয়েছে কোন এক অজানা সমস্যা দিয়ে। সেই সমস্যার কথা অবশ্য প্রথমেই প্রকাশ করেন না লেখক। সমস্যাটা যে আসলে কি, সেটা নিয়েও যথেষ্ট সাসপেন্সের মধ্যে থাকতে হয় পাঠককে। এমনকি এটি এমনই এক ভিন্নধর্মী উপন্যাস যেখানে সমস্যার সমাধান বেরোয় আগে, কিন্তু সমস্যাটা যে আসলে কি তা জানতে পড়ে যেতে হয় একেবারে শেষ অব্দি! ক্লাস সিক্সে পাঠরত সাতিল কোন এক বিশাল সমস্যায় পড়ে, যার সমাধান করতে না পারলে বিপদে সে শুধু একা নয়, পড়বে তার স্কুলের সবাই। সব ক্লাসের সব ছেলেরাই। নিরুপায় হয়ে সেই বিশেষ সমস্যাটার সমাধান করতে সে ডেকে আনে তার ছোটমামাকে যার নাম রাসাদ আর পড়ে অন্য এক স্কুলে ক্লাস এইটে। অত্যন্ত বুদ্ধিমান রাসাদ সাতিলদের স্কুলের হেডস্যারের সাথে কথা বলে এমন ব্যবস্থা করে নেয় যাতে সে কয়েকটা দিন ঐ স্কুলের বিভিন্ন শ্রেণীতে ক্লাস করতে পারে রোল নাম্বার শুন্য হিসেবে। আর তারপর সেই ক্লাস করার ফাঁকে ফাঁকেই সে এমন কিছু কান্ড করে, যার ফলে গল্পের অজানা সমস্যাটির সমাধানের পথ ক্রমশ সুগম হতে থাকে। এবং একটা সময় এসে তা সমাধানও হয়ে যায়। আর তখনই পরিষ্কার হয় যে ঠিক কোন সমস্যা নিয়ে এত চিন্তিত ছিল সাতিল যার ফলে ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারত তার স্কুলের সবাই। দারুণ উপভোগ্য উপন্যাস 'রোল নাম্বার শুন্য'। লেখক রাসাদের মুখ থেকে চুটকি টাইপের যেসব বুদ্ধিদীপ্ত কথা বের করে এনেছেন, সেগুলো ক্ষুদে পাঠকদের নিঃসন্দেহে চমৎকৃত করবে। তবে এটাও মনে রাখা ভাল যে সেসবের অধিকাংশই কিন্তু অনেক পুরনো। জোর করে উপন্যাসের ভেতর লেখক সেগুলোকে যেভাবে ঢোকাতে চেয়েছেন, তা না করে কাহিনীর সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ সংলাপের মাধ্যমে যদি তিনি প্রমাণের চেষ্টা করতেন যে রাসাদ চরিত্রটি আসলেই অনেক বুদ্ধিমান, সেটা হয়ত অপেক্ষাকৃত ভাল দেখাত। তাছাড়া রাসাদের সাথে ক্লাস সিক্স আর সেভেনের ছাত্রদের আলাপচারিতাও খুব একটা বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়নি। প্রথমত, মাত্র ক্লাস এইটে পড়া একটা ছেলে যতই বুদ্ধিমান হোক না কেন, তার মুখ থেকে একটার পর একটা দার্শনিক কথাবার্তা কখনোই 'বিলিভেবল' নয়। সেগুলো বড্ড আরোপিত মনে হয়। আর রাসাদ যে ভঙ্গিতে কথা বলেছে সেটাও অনেক বড় কোন মানুষের মত, একটা কিশোরের মত নয়। ফলে লেখক যে একটা চরিত্রের ভিতরই জোর করে অসংখ্য গুণ চাপিয়ে দিতে চাচ্ছেন, সেটা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে যার ফলে আমি এ-ও মনে করি যে শেষ পর্যন্ত রাসাদ চরিত্রটি স্বয়ংসম্পূর্ণ তো হয়ই নি বরং জগাখিচুড়ি পাকিয়ে ফেলেছে। পাঠককে চিরচেনা কিছু চুটকির মাধ্যমে বিস্ময়ের ঘোরে বেধে রাখতে গিয়ে লেখক কাহিনীতে খুব কম দৃশ্যেরই অবতারণা ঘটিয়েছেন। দৃশ্যপট যদি আরেকটু বাড়ত, তাহলে কাহিনিটা আরেকটু শক্তিশালী হতে পারত। কারণ সংলাপ শুধু একটি দৃশ্যকে শক্তিশালী করে কিন্তু পর্যাপ্ত সংখ্যক শক্তিশালী দৃশ্যের অভাবে একটা কাহিনী ঝুলে পড়তে পারে। তবে কিশোর উপন্যাস বলেই হয়ত এই ঝুলে যাওয়াটা এই উপন্যাসের ক্ষেত্রে খুব বেশি প্রকট হবে না। তাছাড়া যে কয়টি ঘটনার উল্লেখ এই কাহিনীতে ছিল, অধিকাংশই বেশ মজার আর নতুনত্বে ভরা। সবমিলিয়ে বলতে পারি, 'রোল নাম্বার শুন্য' কিশোর পাঠকদের জন্য একটা আদর্শ উপন্যাস হতে পারে। অবশ্যই এই উপন্যাস তাদেরকে নতুন কোন বার্তা দিতে না পারলেও, কিছু সময়ের জন্য তাদের মনে ভালো লাগার আবেশ ছড়িয়ে রাখতে সমর্থ হবে। তবে বড়রা সুমন্ত আসলামের নাম দেখে এই বই পড়লে অবশ্যই হতাশ হবেন। বইটাতে ছোট বড় এত খুঁত আছে যে, সেগুলো কেবল বিরক্তিরই উদ্রেক ঘটাবে।
Childrens-Book
2
বই এর নামঃ দ্য ভিঞ্চি কোড লেখকঃ ড্যান ব্রাউন অনুবাদকঃ মোহাম্মাদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশনাঃ বাতিঘর মূল্যঃ ২৮০ টাকা ( রকমারি) কাহিনীঃ আমরা খালি চোখে যা দেখি তা কি সব সত্য? নাকি তার আড়ালে লুকিয়ে আছে অজানা অনেক কিছু? এক রাতে খুন হল চার জন বিখ্যাত ব্যক্তি। নৃশংসভাবে মেরে ফেলা হয় তাদের। এই চার জন ব্যক্তি ছিলেন খুব গোপন এক সংঘের সদস্য। এরা যুগ যুগ ধরে লুকিয়ে বহন করে নিয়ে বেড়াচ্ছিল এক “সিক্রেট”। যে সিক্রেট বদলে দিতে পারে অনেক জানা তথ্য। বদলে যাবে আপনার জানা ইতিহাস। পুরো পৃথিবী বদলে যাবে নিমেষেই। কি সেই সিক্রেট? এদের ভেতর আছেন এক ব্যক্তি যিনি এক নামকরা জাদুঘর এর কিউরেট। সে মারা যাবার সময়, রবার্ট ল্যংডন এর নাম লিখে যান। তাকে ল্যংডন ঠিকমত চিনেন ও না। কিন্তু তাকে খুন করার অভিযোগে অভিযুক্ত হলেন রবার্ট। কেউ একজন চাইছে ল্যংডন সাহেব কে ফাঁসাতে। খুব সুক্ষ পরিকল্পনার জালে পা দিয়ে ফেলেছেন ল্যংডন। এর মধ্যে গল্পে আগমন সোফি নেভুর। কে এই সোফি নেভু? তো সেই মৃতব্যক্তির মধ্যে যার লাশের পাশে ছিল রবার্ট ল্যংডন এর নাম লেখা। স্বভাবতই সন্দেহের তীর তাঁর দিকেই। অন্যদিকে যে চার জন খুন হলেন, তারা ছিলেন এমন এক গুপ্ত সংঘের সদস্য, যে সংঘের সদস্য তারা ছিলেন, তার সদস্য ছিলেন এমন কিছু মানুষ যাদের নাম শুনলে আপনি আমি বেশ বড়সড় ধাক্কা খাব। বাস্তবে আমি নিজেই খেয়েছিলাম। সেই দলে ছিলেন, স্বয়ং দ্য ভিঞ্চি, স্যার আইজাক নিউটন, ভিক্টর হুগো সহ আরো অনেকে। সেই সিক্রেট কে একদল প্রাণ দিয়ে রক্ষা করতে চাইছে, অন্য দিকে এক দল চাইছে ধ্বংস করে ফেলতে। আর এই দ্বিতীয় দল খুন করেছে সেই চার জন কে। তাদের খুনের লিস্টে আর কে কে আছে? এইদিকে, এক এর পর এক পাতা শেষ হতে হতে আপনার সামনে আসবে, দ্য লাস্ট সাপার, মোনালিসার হাসির পেছনে লুকানো অনেক রহস্য। যা আপনার পিলে চমকে থমকে দেবেই। এইদিকে রবার্ট ল্যংডন আর সোফির পিছু নেয় কিছু মানুষ। একদিকে পুলিশ অন্যদিকে এক চক্র। পালিয়ে তারা আশ্রয় নেই ল্যংডনের এক বন্ধুর বাড়িতে। সেই বাড়ির কোন এক সদস্য সেই খুনে সঙ্ঘের সাথে জড়িত, আড়ালে থেকে সোফি, ল্যংডন আর সেই বন্ধুর সব খবরাখবর পৌঁছে যাচ্ছে গোপনে। একদিকে খুনে সংঘ, অন্যদিকে পুলিশের দল, কিভাবে পৌঁছাবে সেই রহস্যের কাছে রবার্ট আর সোফি নেভু? সেই রহস্যের কাছে পৌঁছানো কি খুব দরকার? সোফি নেভু কে আসলে? রহস্যময়ী এই নারীর পরিচয় আপনারা জানলে অবাক হয়ে যাবেন। বই শেষ এ একটা প্রশ্ন মাথায় আসবেই, আসলেই কি তাই ?আসলেই আমরা যা জানি সেই সব তথ্যই কি তবে ভুল? ব্যক্তিগত মতামতঃ বইটা পড়তে শুরু করে বেশ দীর্ঘ , মানে বেশ বড়সড় একটা রিডার্স ব্লকে পড়েছিলাম। অন্য অনেকে বই পড়ে ফেললেও কোন কারণে এই বই কোনভাবেই শেষ করতে পারছিলাম না। তবে কিছুদিন আগে শেষ করে আমি নিজেকেই দোষ দিয়েছি, কেন বইটা আগে পড়িনি। যাই হোক অনুবাদ বেশ ভাল আর সাবলীল ছিল।বাতিঘরের বানান ভুল একটু থাকে, সেটা ছিল, তুলনামূলক কিছু কম। এই বই লেখক কে আর অনুবাদ কে সত্যি স্যালুট। ব্রাউন সাহেব যে এই লেখা লেখবার জন্য যে কত বড়সড় পড়াশোনা করতে হয়েছে তা বলার অপেক্ষা রাখেনা। অন্যদিকে যদি এই তথ্যের সব কিছু সত্য হয়ে থাকে তবে? এত ব্যাখ্যা, এত রহস্য একেবারে ভিত্তিহীন নিশ্চয়ই নয়। অন্যদিকে আসলেই জানতে ইচ্ছা করবে মোনালিসা ছবির রহস্য কিংবা দ্য লাস্ট সাপার ছবির মধ্যে কোন অজানা সত্য লুকানো আছে। বইটা আরো একবার পড়ে ফেলব যেকোন সময়, শুধু সময় হাতে পাওয়া দরকার। সোফি নেভু আর রবার্টের সাথে হাজার রহস্য আর কোড ভেদ করতে চাইলে এই বইটা পড়ে ফেলুন। বলা যায় না এমন অনেক কোড আপনি ও বের করে ফেলতে পারবেন, যা দুনিয়াতে তাণ্ডব সৃষ্টি করে ফেলবে।
Thriller
1
বইটি আমার সব থেকে প্রিয় বই। কারন সমূহ হল ১) বইটি তে লেখক কিছু কিছু ঘটনার এত সুন্দর আবেশ তৈরী করেসেন যেটা আমার খুবই ভাল লেগেছে। যেমন "স্বপ্নাচ্ছন্নের মতো একমনে কাজ করে চলেসি, সারাক্ষণ মনের মধ্যে অবিচ্ছিন্ন আলোড়ন " এখানে যে আবেশ তিনি সৃষ্টি করেসেন আমার ভাল লাগছে। ২) কাহিনী নির্ভরতা অনেক সুন্দর একটা বিষয়ের উপর একজন জোরকরে শ্লীলতাহানিরর শিকার মেয়ের কথা যেটা পরে গর্ভপাত পর্যন্ত তারপর মা শব্দটার গভীরতা ! বাচ্চার কান্নার সাথে তার অবেচেতন মনের কান্না। ৩) কাহিনী সংলাপ আমাকে মুগ্ধ করেসে ৪) কাহিনী বর্ণনা সুন্দর লাগছে যেমন পিঁয়াজের প্রতিটা লেয়ার ভাঙলে যে রকম আরও বেশী ঝাঁঝ চোখে লাগে সে রকম আর গল্পের ঝাঁঝে পানি পড়েছো চোখের কিন্তু সেটা আনন্দের ৫)শিল্পী মন, ইচ্ছা আর বন্ধুত এবং প্রতিযোগিতা নিয়ে তার মননের প্রতিফলন আমার কাছে মনে হয়েছে তার বাস্তব জীবন উপলব্ধি আরও অনেক কিছু যেমন সাফল্যলাভ কাহিনী, মানব মননের পরিপক্বতা এমন অনেক বিষয় আমার মনে দাগ কেটেসে বইটা পড়ে। আর এককথায় কাহিনী দ্যোতনা আমার খুব ভাল লাগছে আশা করি বইটা পড়বেন
Fiction
0
ফ্ল্যাপ থেকে একজন মানুষ, যার বয়স প্রায় আমার বয়সের কাছাকাছি, তাকে হঠাৎ করে একটা নতুন নাম দিয়ে দেয়াটা এত সোজা না। হেজিপেজি মানুষ হলেও একটা কথা ছিল কিন্তু অনিক লুম্বা মোটেও হেজিপেজি মানুষ নয়, সে রীতিমতো একজন বিজ্ঞানী মানুষ, তাই কথা নেই বার্তা নেই সে কেন আমার দেয়া নাম দিয়ে ঘোরাঘুরি করবে? কিন্তু সে তাই করেছে, আমি নিজের চোখে দেখেছি কেউ যদি তাকে জিজ্ঞেস করে, “ভাই আপনার নাম?” সে তখন সরল মুখ করে বলে, ”অনিক লুম্বা।” মানুষজন যখন তাকায় তখন সে একটু গরম হয়ে বলে, “এত অবাক হচ্ছেন কেন? একজন মানুষের নাম কি অনিক লুম্বা হতে পারে না?” পাঠ প্রতিক্রিয়া যার কাছে সায়েন্স ফিকশন খুব খটমটে লাগে, সে যদি একটা সায়েন্স ফিকশন এর প্রথম চ্যাপ্টার পড়ে যদি হাসতে হাসতে গড়িয়ে পড়ে, এমনকি যখনই ব্যাপারটা মনে পড়ে তখনই আপন মনে আক্ষরিক অর্থেই খিলখিল করে হেসে ফেলে - সে কি তার পরেও সায়েন্স ফিকশন থেকে মুখ ফিরিয়ে নেবে? মনে হয় না। আর এই ব্যাপারটা সত্যি করা একমাত্র জাফর ইকবাল স্যারের পক্ষেই সম্ভব। . যদি হাসিটা প্রথম চ্যাপ্টারেই আটকে থাকতো তাও না হয় মেনে নেওয়া যেত যে, "প্রথম চ্যাপ্টারে হাসির ইলিমেন্ট থাকতেই পারে। এটা সত্যিই খটমটে সায়েন্স ফিকশন! পরের চ্যাপ্টার থেকেই গম্ভীর মুখ করে পুরো বই পড়তে হবে!" সেটাও হল না। হাসির ইলিমেন্ট বাড়তেই থাকলো। ছোট ছোট বিষয়গুলি নিয়ে স্যারের রসিকতা গুলি পড়তে গিয়ে কিছুতেই হাসি আটকে রাখতে পারিনি। . এলো মশা গবেষণা। এটাতেও শুরুতে হেসেছি। খোক্কশ শয়তানটা যখন দু নম্বরী করতে শুরু করলো তখন একটু হাসি বন্ধ ছিল, তারপর এই চ্যাপ্টারের শেষে শালার পরিণতি পড়ে আবার হেসেছি। সাথে রগচটা কাঠমোল্লার অংশটুকু পড়েও। . তারপর ইন্দুরওয়ালাদের কার্যকলাপও খুব মজা লেগেছে। মাস্তানগুলির অবস্থা কল্পনা করতে গিয়ে ভাবছিলাম, এমনটা যদি সত্যিই হতো কী ভয়াবহ অবস্থাই না হত! অবশ্য এরকম সিচুয়েশনে সবসময় শয়তানেরাই পড়ে! . এরপর এলো কিংকর চৌধুরী। কিংকর চৌধুরীর কথা একটু পরে বলি, আগে জাফর ইকবাল স্যারের কথা বলি। উনি নিজেকে নিজেই এত বেশি পরিমানে, এমনভাবে পচিয়েছেন যে যারা তাঁকে চেনে না, তারা এটা পড়লে নির্দ্বিধায় মেনে নেবে জাফর ইকবালের মত অকর্মা আর হয় না! বিজ্ঞানী অনিক লুম্বার সব আবিস্কারই ইউনিক। তাই জাফর ইকবালের মাধ্যমে কবি কিংকর চৌধুরিকে শায়েস্তা করার পদ্ধতিটাও বেশ ইউনিক ছিল। . বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা উদ্ভট উদ্ভট কাজ করে বেড়ায় বলে কি তার সাথেও উদ্ভট ঘটনা ঘটতে হবে? নইলে সদ্য জন্মানো জলপরী তার বাসার সামনে এসেই পড়বে কেন? যাকগে, জলপরী সত্যিই জলপরী কিনা, কিংবা কেন তার নাম জলপরী, সেসবে না যাই। পাঠক বইটা পড়লেই বুঝতে পারবেন সেটা। মোটকথা, মন ভালো করার জন্য আর প্রাণ খুলে হাসার জন্য হলেও বইটা একবার পড়া উচিৎ। . বই পরিচিতিঃ বইঃ বিজ্ঞানী অনিক লুম্বা লেখকঃ মুহাম্মদ জাফর ইকবার মূল্যঃ ১৮০ টাকা (মলাট মুল্য) প্রকাশনীঃ অনুপম প্রকাশনী জনরা: সায়েন্স ফিকশন
Science-Fiction
4
বইয়ের নামঃ থ্রিঃফর্টিসিক্স এএম (3:46 AM) লেখকঃ নিক পিরোগ অনুবাদকঃ সালমান হক ধরণঃ থ্রিলার/রহস্য-রোমাঞ্চ উপন্যাস প্রকাশকালঃ একুশে বইমেলা ২০১৭ প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী পৃষ্ঠাঃ ১২৮ মূল্যঃ ১৫০ টাকা কাহিনী-সংক্ষেপঃ নিক পিরোগের হেনরি সিরিজের ৫ম বই, হেনরি নিজের ভাষাতে বর্নিত বরাবরের মতই। ২৭শে ফেব্রুয়ারি, ২০১৬। এই দিনটার জন্যে অপেক্ষা করে আছে সবাই- হেনরি,ইনগ্রিড, ল্যাসি, হেনরির বাবা,বাবার বন্ধু, ইনগ্রিডের কলিগ ও বন্ধু, মারডক, ইনগ্রিডের পরিবার আরো অনেকে ...।কি আছে এই দিনে ? হেনরি বিনস আর ইনগ্রিডের বিয়ে। সেই কনর সুলিভান কে এক মেয়ের হত্যাকারী রূপে দেখা, সেইখান থেকে ইনগ্রিড এর সাথে পরিচয় এবং শেষমেশ আজকে তার পরিণয় হওয়ার কথা...।। কত হাজারো ঝামেলা মিটিয়ে বেচারা মাত্র ১ ঘন্টা সময় গেল বিয়ে করতে। ৩ টা থেকে ৪ টা... এই এক ঘন্টার ভেতরেই সকল আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতেই হবে...।। অবাক হচ্ছেন? বিয়ের মত একটা প্রোগ্রাম, তাও মাত্র ১ ঘন্টায়?? বিশেষ অতিথি হিসেবে আমন্ত্রিত হন প্রেসিডেন্ট কনর সুলিভান... যেখানে বাঘের ভয় সেইখানে রাত হয়, এই বাক্য কে সত্য মেনে হেনরির বিয়ের আসরে ঘটে যায় মারাত্মক ঘটনা, কি ঘটে? হেনরির বিয়েটা কি শেষমেশ হয়েছিল???? শেষ হল কি ???? আর সব দিনের মতই ৪ টাও সেদিনও ঘুমিয়ে গেল হেনরি। কিন্তু পরেরদিন ঘুম থেকে উঠেই হেনরি তার বাড়িতে কাউকে পেলো না। কেউ ছিলনা, জনমানবহীন.........।। কি ঘটেছিল সেই রাতে? জানতে হলে পড়তে হবে উপন্যাসের শেষ শব্দ পর্যন্ত , শেষ পাতায় আর বড় একটা বোম্ব আছে পাঠকদের জন্য। পাঠ-প্রতিক্রিয়াঃ থ্রিঃ ফোর্টিসিক্স এএম। অন্যান্য বইটির মত এটি বেশ টুইস্টে ভরা। অনুবাদকের কাজ নিয়ে কোন কিছু বলার নাই বেশ ভালো লেগেছে, তবে নিক পিরোগ সাহেব শেষে এসে একটা রহস্যের সুতো ঝুলিয়ে রেখেছেন…। সেটার জন্য অপেক্ষা করতে হবে, তবে হ্যাঁ, প্রথম বইটি যতটা ভাল লেগেছিল , পরের বইগুলো অতটা ভাল লাগেনি, খারাপ লেগেছে সেটাও বলব না। প্রচ্ছদ টা খুব ভাল লাগার মত একটা কাজ...... গল্পটা বেশ ছোট আর তাড়াতাড়ি শেষ হয়েছে বলে মনে হয়েছে, হঠাৎ ই শেষ ...।। মানে হয়ত মাঝে আরো কিছু থাকার কথা, নাই, হেনরির ঘুমের মত – আর জেগে থাকার মত অনেকটা... রেটিং ঃ ৪/৫
Thriller
1
পুরানঢাকায় বড় হওয়া ও বসবাস করার কারনে পুরান ঢাকার ইতিহাস সম্পর্কে জানার আগ্রহ সবসময় কাজ করে।তাই পুরান ঢাকা সম্পর্কিত যেখানে যত বই পাই পড়ে ফেলার চেষ্টা করি।কিন্তু বেশির ভাগ বইই কাঠখোট্টা ইতিহাস অথবা বিশ্বকোষ ধরণের বই।খুব কম বইতেই পুরানঢাকার জীবনযাত্রার ছোয়া পাই।ঢাকা আমার ঢাকা তেমনই একটি বই। বইটিতে তৎকালীন পুরানঢাকার বিভিন্ন জিনিসের বর্ণনা পাই লেখকের নিজের জীবনের বিভিন্ন ঘটনার মধ্য দিয়ে।যেমন ঢাকার সর্দারদের গল্প।নবাব বাড়ির মক্তব।ফকির জমিলা প্রাইমারী স্কুল।তখনকার পুরানঢাকার ঈদ আয়োজন।দুরগা পুজা,জন্মাস্টমীর মিছিল।ঢাকায় তখন মোটরগাড়ির শো হত।প্রথম মোটর গাড়ীর শো এর বর্ণনা ও ছবি। ঢাকেশ্বরী বস্ত্রালয়ের ইতিহাস।ঢাকার নাটক,পিঠাওয়ালীর গল্প।যারা শহরে ঘুরে ঘুরে পিঠা বিক্রি করত।এখন র এসব পেশার মানুষ নেই।আছে ঢাকার পেশোয়ারীর গল্প।সে সময়ের ফটোগ্রাফীর দোকান।ডস ব্রাদারস,তারা মসজিদ ও পরীবাগের শাহ সাহেব।ঐতিহ্যবাহী জগন্নাথ কলেজ। পাটুয়াটুলীর কালিবাড়ী।সিরাজদ্দোলা পার্ক। নর্থব্রুক হল। যতীন এন্ড কো যারা বাদ্যযন্ত্র নির্মাণের জন্যে বিখ্যাত।সদরঘাটের জিপিও।এছাড়াও আসে কবি শামসুর রহমানের কথা যাকে লেখক বাচ্চু ভাই বলে ডাকত। ঢাকার বিখ্যাত ফোটোগ্রাফার হিমাংশু দত্ত,ওয়ারীর ডা নন্দী, অমর শিল্পী আব্দুল আহাদ।আর আছে আতরওয়ালার গল্প। অসাধারন পেইন্টার চিনারির ঢাকায় আগমন ও ছবি,চার্লস ডয়লির আকা ছবি, পাগলার গ্লাসি...এবং অবশেষে বিখ্যাত চকবাজারের গল্প এই সবকিছুর বর্ণনাই লেখক তার জীবনের নানা সৃতির মধ্যে দিয়ে দিয়েছেন। বর্ণনা দিয়েছেন অজস্র মানুষ ও ঘটনার।এর জন্যেই যখনই বইটা পরি তখনই এক অদ্ভুত অনুভুতিতে মনটা ভরে থাকে।।পড়তে পড়তে মনে হয় শত বছরের পুরাতন এই রাস্তা গুলা দিয়ে বর্তমানে আমিও হেটে যাই।এইসব দোকান এ এখনও যাই। সেই পুরাতন বাড়ী গুলাও যেন তেমনই আছে। তখন এখানে কারা থাকত।কেমন ছিল এসব মানুষ।আমি নিজেও যেনও সেই সময়ে চলে জাই।সবকিছুই অনেক আপন আর পরিচিত লাগে।...ঢাকাবাসীর জীবনযাত্রা জানার জন্যে ও উপলব্ধি করার জন্যে একটি যথাযত বই ঢাকা আমার ঢাকা।
War
5
আমি কয়েকদিন বাড়িতে ছিলাম। আব্বা খুবই দুঃখ পেয়েছেন। আমি আইন পড়ব না শুনে বললেন, “যদি ঢাকায় না পড়তে চাও, তবে বিলাত যাও। সেখান থেকে বার এট ল' ডিগ্রি নিয়ে এস। যদি দরকার হয় আমি জমি বিক্রি করে তােমাকে টাকা দিব।” আমি বললাম, “এখন বিলাত গিয়ে কি হবে, অর্থ উপার্জন করতে আমি পারব না। আমার ভীষণ জেদ হয়েছে মুসলিম লীগ নেতাদের বিরুদ্ধে। যে পাকিস্তানের স্বপ্ন দেখেছিলাম, এখন দেখি তার উল্টা হয়েছে। এর একটা পরিবর্তন করা দরকার। জনগণ আমাদের জানত এবং আমাদের কাছেই প্রশ্ন করত। স্বাধীন হয়েছে দেশ, তবু মানুষের দুঃখ-কষ্ট দূর হবে না কেন? দুর্নীতি বেড়ে গেছে, খাদ্যাভাব দেখা দিয়েছে। বিনা বিচারে রাজনৈতিক কর্মীদের জেলে বন্ধ করে রাখা হচ্ছে। বাংলাকে রাষ্ট্রভাষা হিসাবে মুসলিম লীগ নেতারা মানবে না। পশ্চিম পাকিস্তানে শিল্প কারখানা গড়া শুরু হয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে না। রাজধানী করাচি। সব কিছুই পশ্চিম পাকিস্তানে। পূর্ব বাংলায় কিছু নাই। আব্বাকে সকল কিছুই বললাম। আব্বা বললেন, “আমাদের জন্য কিছু করতে হবে না। তুমি বিবাহকরেছ, তোমার মেয়ে হয়েছে, তাদের জন্য তো কিছু একটা করা দরকার।” আমি আব্বাকে বললাম, “আপনি তাে আমাদের জন্য জমিজমা যথেষ্ট করেছেন, যদি কিছু না করতে পারি, বাড়ি চলে আসব। তবে অন্যায়কে প্রশ্রয় দেওয়া চলতে পারে না। আমাকে আর কিছুই বললেন না। রেণু বলল, “এভাবে তােমার কতকাল চলবে।” আমি বুঝতে পারলাম, যখন আমি ওর কাছে এলাম । রেণু আড়াল থেকে সব কথা শুনছিল। রেণু খুব কষ্ট করত, কিন্তু কিছুই বলত না। নিজে কষ্ট করে আমার জন্যে টাকা পয়সা জােগাড় করে রাখত যাতে আমার কষ্ট না হয়।
Political
3
#রকমারিরিভিউপ্রতিযোগ আমাদের এলাকায় বলে, "মা আদরা পুত আর বাপ আদরী ঝি" অর্থাৎ ছেলেরা মায়ের আদরটা বেশী পায় আর মেয়েরা পায় বাবার। কিংবা যদি সাহিত্যেও খুজতে যাই সেখানেও পাবো, "পৃথিবীতে অসংখ্য খারাপ পুরুষ আছে কিন্তু খারাপ বাবা একটাও নেই" কিংবা "একটা মেয়ে হয়তো সারা জীবন তার স্বামীর কাছে রাণী হয়ে থাকে না, কিন্তু একটা মেয়ে তার বাবার নিকট সারা জীবন রাজকন্যা হয়েই থাকে"। এ থেকেই বুঝা যায় পিতা আর কন্যার সম্পর্ক কতোটা ভালবাসার..... হ্যা, এই আখ্যান এক সম্রাটকে নিয়ে এক রাজকন্যার লিখা, এক পিতাকে নিয়ে এক কন্যার। স্কুলটা বাড়ি থেকে বেশ দূরে। সোয়া কিলোমিটার। ছোট খোকা সেই স্কুল মানে গিমাডাঙ্গা টুঙ্গিপাড়া স্কুলের ছাত্র। তখন চলছে ভর বর্ষাকাল। চারদিকে ফুঁসে উঠছে পানি। নৌকা করে স্কুলে যেতে হয়। একদিন নৌকা দিয়ে স্কুলে থেকে বাড়ি ফেরার পথে ঘটল এক দুর্ঘটনা। বর্ষার পানিতে নৌকা ডুবে গেল। নৌকার মধ্যে বেশ কয়েকজন ছিল। খোকা ভরা বর্ষার পানিতে হাবুডুবু খেয়ে কোনমতে পাড়ে এসে উঠল। এদিকে এ খবর দাদির কানে যাওয়া মাত্র তিনি মহা দুশ্চিন্তার মধ্যে পড়ে গেলেন। সেদিন থেকে দাদির কড়া ঘোষণা খোকার স্কুলে যাওয়া বন্ধ। গোটা বংশের আদরের দুলাল এক রত্তি সোনার টুকরো নাতি বলে কথা! নাতিকে কলজের টুকরা বলে জ্ঞান করতেন। টুঙ্গিপাড়া থেকে স্কুল বদল করে খোকাকে পাঠানো হলো ওর বাবার কাছে। গোপালগঞ্জ মিশনারি স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়া হলো তাকে। এরপর খোকার পুরো কৈশোর কেটেছে সেখানেই। শৈশবের গ্রাম, চপলতা, প্রকৃতি পর্যবেক্ষণ, দুস্থ মানুষের পাশে দাঁড়ানো সব মিলিয়ে খোকার ছোটবেলাটা ছিল আর আট-দশটি আটপৌরে বাঙালীর মতোই। সেদিনের সেই ছোট্ট খোকা পরবর্তীতে নিজের প্রজ্ঞা আর দূরদর্শিতা দিয়ে পরিণত হয়েছিলেন মানুষের নেতায়। বাঙালীর স্বপ্নদ্রষ্টায়, বঙ্গবন্ধুতে, স্বাধীনতার স্থপতিতে। বিশ্বের বাংলা ভাষাভাষী মানুষের কাছে অবিস্মরণীয় এক নেতায় পরিণত হয়েছিলেন। যাঁর উচ্চতা ছাড়িয়ে গিয়েছিল আকাশতক। শেখ মুজিবুর রহমান বাঙালীর আত্মমর্যাদার নাম। অহংকারের নাম। বঙ্গবন্ধুর সিংহ হৃদয় মানুষের জন্য সবসময় প্রসারিত ছিল। মানুষকে পরম মমতায় নিজের করে নিতে পারার এক ঐশ্বরিক গুণ ছিল তাঁর। আর মানুষও তাঁর কথায় জীবনবাজি রেখে যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে বিজয় ছিনিয়ে এনে দেখিয়ে দিয়েছিল যে, হে মহান নেতা, তোমার জন্য আমরা সব অসাধ্য সাধন করতে পারি।যুদ্ধদিনে সাড়ে সাত কোটি বাঙালী বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে বিশ্বের অন্যতম প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে এক অসম যুদ্ধে নিজেদের শ্রেষ্ঠত্ব বজায় রেখে তাঁর অমোঘ বাণীকে সত্যে পরিণত করেছিল- তাঁর অনেক পরিচয়। একের ভেতর অজস্র। পুত্র, ভাই, স্বামী, চাচা, মামা, দাদা, নানা, শ্বশুর, শুভাকাঙ্ক্ষী , নিকটজন, নেতা কত পরিচয়েই না তিনি পরিচিত। সব পরিচয়ের আড়ালে লুকিয়ে আছে একজন সজ্জন মানুষের প্রতিকৃতি, একজন বিনয়ী মানুষের অবয়ব সর্বোপরি সিংহ হৃদয় ও বাঙালী অন্তপ্রাণ। প্রতিটি পরিচয়ে নিজেকে উজাড় করে মেলে ধরার প্রয়াস রয়েছে। তাঁর এতসব পরিচয়ের বাইরে একটি পরিচয় নিয়ে কৌতূহল চেপে রাখা বেশ কষ্টকর। সেটা হলো পিতা হিসেবে কেমন ছিলেন বঙ্গবন্ধু? এ বিষয়টি জানা যায় তাঁর বড় মেয়ে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার লেখা থেকে। ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ গ্রন্থে শেখ হাসিনা অপার মমতায় পিতার প্রতিকৃতি তৈরি করেছেন। পিতা বঙ্গবন্ধু ছোটবেলায় কেমন ছিলেন তা বর্ণনা দিতে গিয়ে শেখ হাসিনা লিখছেন, “দাদা আমাদের কাছে গল্প করলেন যে, ‘তোমার আব্বা এত রোগা ছিল যে, ফুটবলে জোরে লাথি মেরে মাঠে গড়িয়ে পড়ত। আব্বা যদি ধারেকাছে থাকতেন তবে সঙ্গে সঙ্গে প্রতিবাদ করতেন। আমরা তখন সত্যিই খুব মজা পেতাম। এর পেছনে মজার ঘটনা হলো মাঝে মাঝে আব্বার টিম ও দাদার টিমের মধ্যেও খেলা হতো। আমি যখন ঐ সমস্ত এলাকায় যাই, অনেক বয়স্ক লোকের সঙ্গে পরিচয় হয় যারা আব্বার ছোটবেলার কথা বলেন।” বড় মেয়ে হিসেবে বাবাকে বেশ কাছে থেকে দেখার সুযোগ পেয়েছেন তিনি। রাজনীতিতে তখন বঙ্গবন্ধুর ব্যস্ততা বাড়তে শুরু করেছে। বঙ্গবন্ধুর অস্তিত্বে, চিন্তা-ভাবনায় হৃদয়বান মানুষের ছায়া দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হয়ে উঠত। ‘দাদির কাছে গল্প শুনেছি, যখন ছুটির সময় হতো তখন দাদি আমগাছের নিচে এসে দাঁড়াতেন। খোকা আসবে দূর থেকে রাস্তার ওপর নজর রাখতেন। একদিন দেখেন তাঁর খোকা গায়ের চাদর জড়িয়ে হেঁটে আসছে, পরনের পায়জামা-পাঞ্জাবি নেই। কী ব্যাপার, এক গরিব ছেলেকে তাঁর শত ছিন্ন কাপড়ে দেখে সব দিয়ে এসেছেন।’ ১৯৪৯ সালে রাষ্ট্রভাষা বাংলার দাবিতে ছাত্র সমাজের গড়ে ওঠা আন্দোলনে তিনি ছিলেন সোচ্চার। এই আন্দোলনে সক্রিয় ভূমিকার জন্য বঙ্গবন্ধুকে গ্রেফতার করা হয়। এ প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা তাঁর পিতাকে নিয়ে একটি অসাধারণ মানবিক ঘটনার কথা উল্লেখ করছেন। বইটি মূলত ১৯৮৩ থেকে ১৯৯৮ সাল পর্যন্ত তার লেখা বিভিন্ন পত্রিকায় প্রকাশিত প্রবন্ধ ও সংকলনের সংগ্রহ। বইটি তে তিনি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নির্মম হত্যাকান্ড এবং একজন সন্তান হয়ে বাবার নৃশংস হত্যাকান্ডের বোঝা বহনের যন্ত্রণা প্রকাশ করেছেন। প্রায় দশটি প্রবন্ধে সাজানো এই বইটিতে শেখ হাসিনা তার লেখনী প্রতিভার অসাধারণ নৈপূণ্য দেখিয়েছেন। বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের ‘পথের পাঁচালী’র মতো মধুমতি নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠা টুঙ্গপাড়ার সৌন্দর্য বর্ণনা করেছেন আপন মহিমায়। টুঙ্গিপাড়ার সৌন্দর্য তোলে ধরতে গিয়ে লেখিকা বলেছে ‘‘নদীর দুপাশে তাল, তমাল, হিজল গাছের সবুজ সমারোহ। ভাটিয়ালি গানের সুর ভেসে আসে হালধরা মাঝির কণ্ঠ থেকে, পাখির গান আর নদীর কলকল ধ্বনি এক অপূর্ব মনোরম পরিবেশ গড়ে তোলে”। টুঙ্গীপাড়া গ্রামে নদীর পাশে একটি ঘর বানিয়ে জীবনের শেষ সময়গুলো ব্যায় করার আগ্রহ প্রকাশ করেন এ লেখিকা। বইতে বঙ্গবন্ধু ও তার সেনাবাহিনী এবং কিছু বিপদগামী নরপিশাচদের ন্যাক্কারজনক ১৫ আগস্টের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বুঝাতে চেয়েছেন, জাতির পিতার হত্যার জন্য তিনি সব সেনাবাহিনীকে দোষারোপ করছেন না। পরাজিতরাই প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে জাতির জনককে হত্যা করেছে।এবং পরবর্তী সময় বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে এই হায়নারা কেমন করে আশ্রিত-পালিত হয়েছে তার ঘটনা প্রবাহ আলোকপাত করেছেন। শহীদ জননী জাহানার ইমামের করুণ পরিনতি এবং রাষ্ট্রর তৎকালীন ক্ষমতাসীনরা স্বাধীনতা বিরোধীদের প্রতি যে প্রীতি প্রদর্শন তার তীব্র সমালোচনা করেছেন। স্বৈরাচারী আন্দোলনে তার নেতা কর্মীদের নিপীড়ণ এবং পিঠে বুকে গনতন্ত্রের স্লোগান বহনকরী নুর হোসেনের আত্মদান খুব করুণভাবে তোলে ধরেছেন একজন বোন হয়ে। ‘শেখ মুজিব আমার পিতা’ বইটি পড়তে পড়তে পাঠকের মনে গভীর রেখাপাত তৈরি করবে। একজন আটপৌরে বাঙালী কী করে একজন দায়িত্ববান পিতা হয়ে উঠতে পারে এ বই তার জ্বলন্ত প্রমাণ। এই বইটি পড়ে জ্ঞান উৎসাহী পাঠকরা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সম্পর্কে একটি কথা স্বীকার করবেন যে, তিনি একজন অসাধারণ পাঠক। একজন পাঠকই একজন অসাধারণ লেখকে পরিনত হন। জ্ঞান অন্বেষণে লেখিকার আগ্রহ আমাকে মুগ্ধ করেছে। বইটি পড়ে শেখ হাসিনার সাথে আজ নতুনভাবে পরিচিত হলাম। আট দশটা সাধারণ বঙ্গালি মেয়ের মতো টুঙ্গিপাড়ায় পরবর্তীতে ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বেড়ে উঠা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ তথা বিশ্বের ক্ষমতাধর রাষ্ট্র নায়েক হিসেবে গড়ে উঠার পিছনের ইতিহাসটা যে কোন মানুষকেই উৎসাহিত করবে বলে মনে করছি।
Political
3
বইঃসূর্য দীঘল বাড়ি লেখকঃ আবু ইসহাক প্রথম প্রকাশঃ১৯৫৫ প্রকাশকঃনওরোজ সাহিত্য সম্ভার মূল্যঃ ১০৬টা ধরণঃ চিরায়িত বাংলার উপন্যাস সময় টা দেশ বিভাগের। ১৯৪৭ সালের আগে পরে।নানা চড়াই-উৎরায় পেরিয়ে মাথা গোঁজার ঠায় পেতে জয়গুন তার ছেলে হাসু আর মায়মুন, তার ভাইবউ শফির মা আর শফি ফিরে আসে গ্রামে। মাথা গোঁজে সূর্য দীঘল বাড়িতে। পূর্ব-পশ্চিমদিকে মুখ করা এই বাড়িগুলো বহন করে চলে অভিশাপ। বংশ নির্বংশ হবার অভিশাপ। নিরুপায় এই দুই নারী বাধ্য হয় বিশাল একাকী তাল গাছের নিচে একটু মাথা গোঁজার ঠায় করে নিতে। খাবার মুখে তোলার জন্য কি জীবন এদের। গাড়িতে, ট্রেনে করে দূর-দূরান্ত পাড়ি দেয় এক সের চালের জন্য। হাসু কুলিগিরি করে মায়মুন ঘর সংসার দেখে। জব্বর মুন্সীর স্ত্রী হিসেবে জয়গুনের রাস্তায় খাবারের খোঁজে নামা কেউ ভালো দেখেনা। কিন্তু সে নিরুপায়। তার দ্বিতীয় স্বামী করিম বখশ, ছেলে কাসু কে রেখে মায়মুন আর আরেক কন্যা সহ বের করে দেয়। কোলের মেয়েটি খাবারের অভাবে মারা যায়। দিন এর পর দিন কাসু কে না দেখা মা কাসু কে দেখতে অস্থির হয়ে থাকে। এসবের মাঝেই এই অপয়া বাড়ি বন্ধ করে এক ফকির এসে।বার বার বছর বছর। একক পেতলের কলসী দেবার কথা ছিল। দেয়া হয়ে ওঠেনা। যাদের এক বেলা খাবার জোটে না,তারা পেতলের কলসি জোগান কি দেবে?? আবার ফকিরের কুৎসিত ইংগিত এ সাড়া না দেয়ায় আর বাড়ী বন্ধ করে না ফকির। এ মুখো আর হয়নি। সূর্য দীঘল বাড়ী থেকে দূরে থেকেও কাসু মরতে বসে।কাসু বাঁঁচবে?? সূর্য দীঘল বাড়ীর অভিশাপ কাটিয়ে জয়গুন কি টিকে থাকতে পারবে?? পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ বই এর নাম আরো আগে জানা সেই স্কুলে থাকার সময়, জোঁক গল্প পড়ার সময়। কলেজ উঠে পড়েছিলাম। কুসংস্কার-অন্ধবিশ্বাস এ মোড়া এই উপন্যাস। এভাবেই চলে জয়গুন এর জীবন। দেশ বিভাগ হলে ভেবেছিল তার ক্ষুধার কষ্ট চলে যাবে, যায় না। কেন?? আসলেই কি অভিশপ্ত সূর্য দীঘল বাড়ী??? সূর্য দীঘল নামটা পারসোনালি আমার খুব প্রিয়।কিন্তু এটা যে অভিশাপ বয়ে নিয়ে বেড়াচ্ছে।
Fiction
0
জহির রায়হানের লেখা সবসময়ই জাদুকরী। প্রচণ্ড শক্তিশালী ছোট ছোট বাক্যে ভাব প্রকাশের মাধ্যমে তিনি পাঠককে সম্মোহিত করে রাখেন। ‘উপন্যাস সমগ্র’ বইটিতে জহির রায়হানের লেখা সাতটি অসাধারণ উপন্যাস স্থান পেয়েছে। উপন্যাসগুলো হল ‘হাজার বছর ধরে’, ‘আরেক ফাল্গুন’, ‘শেষ বিকেলের মেয়ে’, ‘তৃষ্ণা’, ‘কয়েকটি মৃত্যু’, ‘আর কত দিন’ এবং ‘একুশে ফেব্রুয়ারি’। এই উপন্যাসগুলোর মধ্যে ‘হাজার বছর ধরে’ এবং ‘কয়েকটি মৃত্যু’ উপন্যাস দুটি নিয়ে নিচে সংক্ষেপে আলোচনা করবো যাতে পাঠক জহির রায়হানের লেখা উপন্যাসগুলো সম্পর্কে ধারণা পেতে পারেন। ১. হাজার বছর ধরে : ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি বাংলাদেশের গ্রাম-বাংলার আবহমানকাল ধরে চলে আসা সাধারণ মানুষের জীবন ও সংস্কৃতির এক সূক্ষ্ম ও সুনিপুণ আখ্যান। ক্ষণজন্মা কথাসাহিত্যিক জহির রায়হান এই উপন্যাসে দেখিয়েছেন, কোন রকম শক্তিশালী গল্প ছাড়াও শুধুমাত্র গল্প বলার আশ্চর্য নির্লিপ্ত ভঙ্গি এবং জীবনের প্রতিটি ক্ষুদ্র সাধারণ বাঁক পরম মমতায় তুলে আনার মাধ্যমে কীভাবে একটি উপন্যাসকে কালজয়ী করে তোলা যায়। হাজার বছর ধরে উপন্যাসের কাহিনী আলোচনায় যাওয়ার আগে বর্তমান সময়ের প্রেক্ষিতে এই উপন্যাসটি কেন গুরুত্বপূর্ণ সে বিষয়ে একটু আলোকপাত করি। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে বাঙালির হাজার বছরের জীবনধারা খুব যত্নের সাথে তুলে আনা হয়েছে। কিন্তু মজার ব্যাপার হচ্ছে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রযাত্রার ফলে শেষ দুই দশকে শুধু শহুরে জীবনে নয়, গ্রামীণ জীবনেও আমূল পরিবর্তন এসেছে। এখন বাংলাদেশের বেশিরভাগ গ্রামেই বিদ্যুৎ চলে যাওয়ায় কুপি জ্বালানো সন্ধ্যাগুলো হারিয়ে যাচ্ছে। ঘরের দুয়ার পর্যন্ত পাকা-রাস্তা চলে আসায় গরুর গাড়ির ঐতিহ্য আর নেই বললেই চলে। ফলে আজ থেকে আর কয়েক দশক পরে হয়তো আলোচ্য উপন্যাসে বর্ণিত গ্রামের মত আর একটা গ্রামও খুঁজে পাওয়া যাবে না। সে সময় ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটিই হয়ে থাকবে বাঙালির হাজার বছরের ইতিহাস, ঐতিহ্যের অসামান্য দলিল। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসে জহির রায়হান একটি পরিবারের মাধ্যমে গ্রাম-বাংলার শত শত পরিবারের বাস্তবতা আমাদের সামনে নিয়ে এসেছেন। এই পরিবারের সদস্যরা আটটি পাশাপাশি ঘরে বাস করে। এরা সবাই সুখে-দুঃখে একে ওপরের পাশে থাকে। কখনও হয়তো এদের মধ্যে তুমুল ঝগড়া বেঁধে যায়। আবার সব ঠিক হয়ে যায়। এই পরিবারের কর্তা মকবুল। এই চরিত্রটির মাধ্যমে লেখক গ্রাম-বাংলার মোড়লের চরিত্রটিকে তুলে আনার চেষ্টা করেছেন। লেখক এই উপন্যাসে আবহমানকালের গ্রাম-বাংলার প্রায় সব দিকই তুলে এনেছেন। এই উপন্যাসে বাল্য বিবাহের প্রসঙ্গ এসেছে, বহু বিবাহের কথা এসেছে। নারীদের অসম্মান করার ব্যাপার উঠে এসেছে, এমনকি বউকে পিটিয়ে মেরে ফেলাও যে তৎকালীন সময়ে এমন অস্বাভাবিক কোন ব্যাপার ছিল না সেটাও লেখক অসাধারণ দক্ষতায় তুলে ধরেছেন। এই বইয়ে সামাজিক কুসংস্কারের কথা উঠে এসেছেন, পরকীয়া প্রেমের কথাও বাদ যায় নি। মোটকথা আবহমানকাল ধরে চলে আসা বাঙালি জীবনের প্রায় প্রতিটি দিকই ঔপন্যাসিক অন্তত সুন্দরভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন। ‘হাজার বছর ধরে’ উপন্যাসটি নিঃসন্দেহে বাংলা-সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি এবং জহির রায়হানের শ্রেষ্ঠ সাহিত্যকর্ম। ২. কয়েকটি মৃত্যু : জহির রায়হানের লেখা ‘কয়েকটি মৃত্যু’ উপন্যাসিকাটি বাংলা সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ সংযোজন। আমরা প্রতিদিনের জীবনে সব সময় মৃত্যুর বাস্তবতাকে ভুলে থাকি বা ভুলে থাকার চেষ্টা করি। কিন্তু এই সত্য যখন মানুষের খুব কাছে এসে দাঁড়ায় তখন নিজের জীবন বাঁচানোর জন্যে মানুষ কতটা স্বার্থপর হতে পারে সেই ছবিই লেখক ‘কয়েকটি মৃত্যু’ উপন্যাসিকায় অসাধারণ ভাবে তুলে এনেছেন। আহমদ আলী শেখের পরিবারকে কেন্দ্র করেই এই উপন্যাসিকার কাহিনী আবর্তিত হয়েছে। আহমদ আলী শেখের সুখের সংসার। তার বড় ছেলে শহরের নামকরা উকিল, মেজ ছেলে ইঞ্জিনিয়ার, সেজ ছেলে পাটের ব্যবসা করে আজকাল ভালোই আয়-রোজগার করছে। তিনি তিন ছেলেকেই সুন্দর, সৎ চরিত্রের তিনটি মেয়ের সাথে বিয়ে দিয়েছেন। নাতি-নাতনী দিয়ে তার ঘর ভরা। তার সংসারে কোন রকম কষ্ট নেই, অভাব নেই। তিনি মাঝে মাঝেই পরিবারের সবাইকে এক ঘরে ডেকে নিয়ে এসে তাদের মুখের দিকে তাকিয়ে থাকেন। যেন তার সারা জীবনের পরিশ্রমে ক্ষেতে যে ফসল ফলেছে তা দেখছেন। কিন্তু এই সুখের সংসারে হঠাৎ করে একদিন মৃত্যুর ঘণ্টাধ্বনি বেজে উঠলো। তিনি স্বপ্নে দেখলেন তার মৃত আত্মীয়-স্বজন তাকে নিয়ে যেতে এসেছে। ঠিক এ রকমই একটি স্বপ্ন আহমদ আলী শেখের বাবা দেখেছিলেন। এবং তা দেখার পর তিনি ও তার মেজ ছেলে মারা গিয়েছিলেন। এই স্বপ্ন দেখার পর আহমদ আলী শেখ অত্যন্ত উৎকণ্ঠিত হয়ে সব ছেলে এবং তাদের বউদের ঘরে ডেকে এনে স্বপ্নের কথা বললেন। ছেলেরা মুখে বলল, ও সব স্বপ্ন কিছু না। কিন্তু তাদের মৃত্যু ভয় পেয়ে বসল। বড় ছেলে নিজের ঘরে গিয়ে চিন্তা করতে বসল, সে সারা জীবন শুধু পাপই করে গেছে। পরকালের জন্যে কিছুই করে নি। সে তার বউয়ের কাছে নামাজ পড়ার জন্যে জায়নামাজ চাইলো। ওদিকে মেজ বউ তার ভবিষ্যতের কথা ভেবে মেজ ছেলেকে ইন্সিওরেন্সের টাকা সম্পর্কে জিজ্ঞেস করে বসল। তখন মেজ ছেলে দুনিয়ার নিষ্ঠুর বাস্তবতা উপলব্ধি করতে পারলো। যে পরের মেয়েকে সে এখন সবচেয়ে আপন ভাবছে, সেই মেয়ে তার মৃত্যুর পর কীভাবে খাবে-পড়বে সে চিন্তায় ব্যস্ত। তার মৃত্যু নিয়ে মোটেও চিন্তিত না। এইদিকে বাড়ির অসুস্থ ছোট ছেলেটাও আহমদ আলী শেখের মত একই স্বপ্ন দেখলো। তখন সবাই এই ভেবে আশ্বস্ত হল যে তাহলে বাবা আর ছোট ভাই-ই মারা যাচ্ছে। কারণ আগেরবারও যে দুজন স্বপ্ন দেখেছিল তারাই মারা গিয়েছিলো। সবাই এই ব্যাপারে যখন মোটামুটি নিশ্চিত তখন আহমদ আলী শেখ আবার স্বপ্ন দেখলেন। এবার তাকে জিজ্ঞেস করা হচ্ছে, তার যে কোন দুইটা ছেলের নাম বলার জন্যে যাদের জান কবচ করা হবে। তখন আহমদ আলী শেখ অত্যন্ত স্বার্থপরের মত বললেন, তার দুইটা ছেলের জান কবচ না করে যেন ঘরে যেই তিনটা বউ আছে তাদের জান কবচ করা হয়। এভাবে মৃত্যুর মত অব্যর্থ বাস্তবতা যখন মানুষের সামনে এসে দাঁড়ায় তখন মানুষ নিজের স্বার্থ কত রকমভাবে সংরক্ষণের চেষ্টা করতে পারে তা লেখক চোখে আঙুল তুলে এই উপন্যাসিকায় দেখিয়ে দিয়েছেন। জহির রায়হানের লেখার সহজাত বৈশিষ্ট্য হল, ছোট ছোট জোরালো বাক্যের ব্যবহার। সেই বিষয়টি এই উপন্যাসিকায় আরও স্পষ্ট ভাবে বোঝা গিয়েছে। আর অসাধারণ সাবলীল বাস্তবধর্মী বর্ণনাভঙ্গি এই বইয়ের গল্পকে আরও মোহনীয় করে তুলেছে, আরও হৃদয়স্পর্শী করে তুলেছে। ‘কয়েকটি মৃত্যু’ উপন্যাসিকাটি পড়ার পর যে কোন পাঠকই অন্তত কয়েক মুহূর্তের জন্যে স্তব্ধ হয়ে যাবেন। একবার হলেও নিজের মৃত্যু নিয়ে ভাবতে বাধ্য হবেন। পরিশেষে বলতে হয়, জহির রায়হানের লেখা ‘উপন্যাস সমগ্র’ অবশ্যই সংগ্রহে রাখার মত একটি বই।
Fiction
0
বাংলা সাহিত্যের সেরা ১০ এর তালিকা করলে হয়তো খুব সহজেই প্রথম দিকেই নিজের স্থানটা পাকাপোক্ত করে নিতে পারবে এই উপন্যাসটা। ততকালীন বঙ্গীয় সমাজে হিন্দু মসলমানের টানা পোড়ন কে এক অদ্ভূত জাদুকরী দক্ষতায় লিখে গিয়েছেন লেখক। অসাধারণ!
Fiction
0
Average quality story if compare with other few high strand books from same author. But of course every book will not be the best one. It's worthy as early release on book fair 2016. But for other time I will recommend Phoenix (ফিনিক্স) as that has similar plot but much better story.
Science-Fiction
4
it is very good
Fiction
0
When this book will available in your stock
Political
3
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_মে বইঃ ইন্দ্রজাল - হাজার বছরের পিছুটান লেখকঃ জিমি হাইসন প্রকাশনীঃ ঐতিহ্য প্রচ্ছদঃ বেতিবুপ থ্রি থ্রি স্টুডিও (ইতালি) ধরণঃ ঐতিহাসিক উপন্যাস পৃষ্ঠা সংখ্যাঃ ১৪০ মলাট মূল্যঃ ২৫০ টাকা প্রকাশঃ একুশে গ্রন্থমেলা ২০১৯ কাহিনী সংক্ষেপঃ উপন্যাসের মুখ্য চরিত্র সায়মন বিখ্যাত রোমান প্রত্নতত্ত্ববিদ। বংশপরম্পরায় এ পেশায় নিয়োজিত হওয়া সায়মন হাজার বছরের প্রাচীন নিদর্শনের সন্ধানে পাড়ি জমায় গ্রিসের কাভালোয়। তিন হাজার বছরের পুরনো জিউস মন্দিরের তলদেশে খুঁজে পায় বাক্সবন্দী হয়ে থাকা ব্রোঞ্জ নির্মিত একটি দরজা। যেটিকে দেখলেই অন্যরকম এক মোহে আকৃষ্ট হয়ে যায় সে। শক্ত হাতে আলিঙ্গন করতে ইচ্ছে করে। একসময় সেই দরজা দিয়েই প্রবেশ করে সময়ের ইন্দ্রজালে। ফিরে যায় আঠারোশ বছর অতীতে জুলিয়াস সিজারের সময়ে। সেখানে খুঁজে পায় অপরূপ সুন্দরী ইসাবেলকে। আস্তে আস্তে জরিয়ে যেতে থাকে তার মহামায়ায়। অতীতের মায়া কাটিয়ে সায়মন কি ফিরতে পারে তার সময়ে?! পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ ইতিহাস নির্ভর উপন্যাসগুলো বরাবরই প্রিয়। এরসাথে কিছু পৌরাণিক কাহিনী যুক্ত করলে সেটি হয় আরও আকর্ষণীয়। ইন্দ্রজাল উপন্যাসে তারই প্রমাণ দিয়েছেন বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত লেখিকা জিমি হাইসন। এ গল্পের মধ্য দিয়ে পৌঁছে যাওয়া যায় প্রাচীন রোম শহরে। কল্পনার ক্যানভাসে চিত্রায়িত করা যায় ইসাবেলের অপরূপ সৌন্দর্য, জুলিয়াস সিজারের রক্তাক্ত দেহ, অগাস্টাস সিজারের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ রোমান শাসক হয়ে ওঠাসহ আরও অনেক ঘটনা। গল্পের শেষটায় অনেকেরই মনে পারে "ইস, শেষ না হয়ে আর কিছুক্ষণ চলতো!" সর্বোপরি বইটা খুব ভালো লেগেছে। সময় করে আপনারাও পড়ে দেখতে পারেন। আশা করি ভালো লাগবে। ব্যক্তিগত রেটিংঃ ৫/৫ #হ্যাপি_রিডিং
Thriller
1
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_নভেম্বর_২০১৮ বইঃএকাত্তরের চিঠি প্রকাশনীঃপ্রথমা সংকলন ধরনঃমুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস- চিঠি, ডায়েরি ও স্মৃতিচারণ দামঃ ৩২০ টাকা অনেকদিন আগে চিঠি লেখাটা ছিলো, একটা শিল্পের মতো, কিন্তু এখন এই ফেসবুকের দুনিয়ায় এই শিল্প বিলীনের পথে।।। আগে মনের ভাব প্রকাশ করা হতো এই চিঠির মাধ্যমে, এটা আমাদের সবারই জানা। এরকম ই এক সময়ে, সংঘটিত হয় মুক্তিযুদ্ধ,, দিনের পর দিন না দেখা হওয়া মানুষগুলো লিখতে থাকে তাদের মনের ভাব, আর লেখা সম্পূর্ণ হইলেই পাঠিয়ে দেয় প্রিয়জনের কাছে।। কিন্তু চিঠিগুলো কি আদৌ ঠিক মানুষের কাছে পৌছাবে কিনা, তা নিয়ে সন্দিহান থাকে চিঠির লেখকেরা।। সব সময় মনে একটা ভয়, কি হবে!! কি হবে!! বইটিতে ১৫০টি চিঠি সংগ্রহ করা আছে।।। মুক্তিযুদ্ধের সময় বিভিন্ন ক্যাম্পে থেকে মুক্তিযোদ্ধারা যে চিঠি লিখেছেন তাদের আত্মীয়স্বজনদের উদ্দেশ্যে সেগুলো, এবং যারা বাড়ি থেকে যুদ্ধের জন্য বাবা মা কে না বলে চলে গিয়েছিল তাদের চিঠি সংকলিত রয়েছে।। এর মাঝে কেউ কেউ ছিলেন যারা দেশ স্বাধীন করে আবার ঘরে ফিরতে পেরেছিল,,আবার কেউ কেউ আছে চিঠি লেখার কিছুদিন পরেই পাকিস্তানি সৈনিকদের হাতে মারা যায়,,, মায়ের প্রতি নিজের সংসারের প্রতি কিছু দ্বায়িত্ববোধ থেকেও রয়েছে আবেগমাখা কিছু চিঠি।। কিছু চিঠি ছিল বড় অনেক সাংসারিক আলাপে ভরপুর,,সেগুলোর বিষয়বস্তু ছিলো জমিজমা নিয়ে।এগুলো পড়তে একটু খারাপ লেগেছে, আবার কিছু ছিলো বাবার দ্বায়িত্ববোধ থেকে সন্তানের প্রতি খেয়াল রাখার আবদার, তার সহধর্মিনির প্রতি।।এগুলো খুবই আবেগে পরিপূর্ণ ছিলো। বাবা এবং তার ছোট বাচ্চা, মা ও তার ছেলে, আবার সদ্য জন্মগ্রহন করা বাচ্চার সাথে তার না দেখতে পারা বাবার যে কষ্ট এইসব চিঠিগুলো পড়ার সময় দৃশ্যগুলো চোখে ভাসছিলো।। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ প্রথম দিকে ভালোই আাগাচ্ছিলাম চিঠিগুলো পড়তে পড়তে, মাঝে একটু একঘেয়েমি লেগেছিল পড়ে আবার ঠিক হয়ে গেছে। আশা করি কারও খারাপ লাগবেনা,, তবে একটু সময় নিয়ে পড়তে হবে,,, প্রতিদিন ২/৩ টা করে পড়লে একঘেয়েমি আসবেনা।।
War
5
this book is anisul haque's first novel and in my opinion the best one too. it is a political fantasy novel which displays the rise of the religious extremists and their horrible conspiracies to destroy Bangladesh's culture, economy and development. the writer shows how these extremists think of only themselves and misuse religion in order to manipulate people.but the writer did not mock any religion during this whole fantasy he rather showed respect to the true meaning of religion by criticizing it's manipulators. but this book's most amazing part is the rise and revolution of the so called "mango people". this book truly shows the writer's credibility, courage and also his ability to create a revolutionary masterpiece.
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগীতা বই- টেল মি ইউর ড্রিমস। লেখক- সিডনী শেলডন। অনুবাদ- অনীশ দাস অপু। প্রকাশনী- অনিন্দ্য। ধরন- মনস্তাত্তিক থ্রিলার। পৃষ্ঠা- ২৫৬। প্রধান চরিত্র- অ্যাশলী প্যাটারসন, টনি প্রেসকট, অ্যালেট পির্টাস, ডাঃ ষ্টিভেন প্যাটারসন, এডভোকেট ডেভিড, ড. সালেম। আমেরিকার ছোট্ট শহর কুপেরটিনোতে কাজ করে অ্যাশলি প্যাটারসন। ছোটবেলাতে ওর মা গাড়ি অ্যাক্সিডেন্টে মারা গেছে। তার বাবা ডাঃ ষ্টিভেন প্যাটারসন একজন বিখ্যাত হার্ট স্পেশালিষ্ট ও সার্জন। পাশাপাশি তিনি একজন বদমেজাজী লোক। কুপেরটিনোতে অ্যাশলী গ্লোবাল কম্পিউটার গ্রাফিক্স নামক একটি প্রতিষ্ঠানে কর্মরত। ভালো বেতন পায়। তার শৈশবের একটা উল্লেখযোগ্য সময় গিয়েছে লন্ডন ও রোমে তার বাবার কর্মস্থলে। অবশ্য লন্ডনের ব্যাপারে তা একটা দুঃখজনক অতীত আছে। স্কুলে থাকাকালীন জিম নামক একটি ছেলেকে ভালোবাসতো অ্যাশলী। জিমও তাকে ভালোবাসতো। কিন্তু অ্যাশলীর বাবা তা কখনোই মেনে নিতে পারেনি। ওরা পালিয়ে যেতে চায়। কিন্তু ঘটনার দিন রেলষ্টেশনে হাজির হয়না জিম। পরদিন তাকে বাবার সাথে লন্ডন চলে আসতে হয়। গ্লোবাল কম্পিউটার গ্রাফিক্সে ডেনিশ টিবল নামে একজন কর্মরত আছে যে সর্বদা অ্যাশলীর পিছনে লেগে আছে তবে অ্যাশলী তাকে পাত্তা দেয় না। স্কুল পুর্ণমিলনীর কারনে অ্যাশলী তার পুরোনো শহরে ফিরে যায়। সেখানে গিয়ে সে একটা ভয়ংকর সত্য জানতে পারে। যেদিন অ্যাশলীর লন্ডন চলে আসার কথা, তার আগের দিন জিমকে ভয়ানক ভাবে খুন করা হয়। তাকে উর্পযুপরী ছুরি মারা হয় ও তার পুরুষাঙ্গ কেটে নেওয়া হয়। ঘটনা শুনে স্তব্ধ হয়ে যায় অ্যাশলী। নিজের অজান্তে তার বাবার ওপর সন্দেহ চলে যায় তার। কিন্তু একই ঘটনা ঘটে কুপেরটিনোতে। ডেনিশ অ্যাশলীকে কৌশলে তার ফ্ল্যাটে নিয়ে আসে। এবং তাকে একটা কড়া মাদক খাইয়ে অজ্ঞান করে দেয়। দুদিন পর অ্যাশলী নিজেকে আবিষ্কার করে শিকাগোতে একটি স্বস্তা হোটেলে। অগত্যা বাবার সাহায্য নিয়ে সে নিজ শহরে ফিরে এবং তাকে সংক্ষিপ্তভাবে কিছুটা ঘটনা জানায়। তার পরদিন সে শুনতে পায় একই কায়দায় ডেনিশকেও খুন করা হয়েছে। বাবার প্রতি ওর সন্দেহ জোরদার হয়। টনি প্রিসকট বেপোরোয়া স্বভাবের ব্রিটিশ মেয়ে। লন্ডনে জন্ম নেওয়া টনিও কাজ করে গ্লোবাল কম্পিউটারে। সে খুব সুন্দর গান করতে পারে। তবে অফার পাওয়ার পরও কখনো গানের জগতে প্রবেশ করেনি সে। ইন্টারনেটের মাধ্যমে ইতালিয়ান গহনা ব্যবসায়ী জা ক্লদের সাথে তার পরিচয়। কোম্পানীর কাজের জন্য রোমে যাওয়া হয় টনির এবং সেখানে জা ক্লদের সাথে সে দেখাও করে। ক্লদ তাকে একটি হিরার আংটি উপহার দেয়। এরপর দিনই জা ক্লদ তার অ্যাপার্টমেন্টে খুন হয়। আগের বলা কায়দাতেই তাকে খুন করা হয়। অ্যালেট পির্টাস শান্ত, সুন্দরী এক ইতালিয়ান মেয়ে। গ্লোবাল কম্পিউটারে কাজ করা ছাড়াও অবসর সময়ে ছবি আকে সে। এছাড়া চ্যারিটিও করে যখন তার মন ভালো থাকে। ছবির সূত্র ধরেই রির্চাডের সাথে তার পরিচয়। রির্চাড একজন চিত্রশিল্পী। এছাড়া টনির বেষ্টফ্রেন্ড হচ্ছে অ্যালেট। যেকোনো কাজ সে অ্যালেটের পরামর্শ নিয়ে করে। রির্চাড ও অ্যালেট একে অপরের প্রতি দুর্বল হয় যা প্রেমে রুপান্তরিত হয়। কিন্তু একটা ভয়ানক ঘটনা ঘটে যায়। এক সাইকো খুনী রির্চাডকে খুন করে এবং তার পুরুষাঙ্গ কেটে ফেলে। পুলিশ তদন্ত শুরু করে। অ্যাশলীকে প্রশ্ন করা হয় তবে কিছু জানা যায় না। ওদিকে টনি আর অ্যালেটের কোনো খোজ পাওয়া যায় না। তারা যেনো গায়েব। ওদিকে হুমকি অ্যাশলীও পাচ্ছে। অগত্যা এক ডিটেকটিভ আসে অ্যাশলীকে পাহাড়া দিতে রাতের বেলা। পরদিন তাকেও একই কায়দায় মৃত পাওয়া যায়। অ্যাশলীকে গ্রেফতার করা হয়। মিডিয়া এই ঘটনা নিয়ে পাগল হয়ে যায়। এদিকে সব প্রমান যায় অ্যাশলীর বিরুদ্ধে। যারমধ্যে গুরুত্বপূর্ণ প্রমান হচ্ছে প্রতিটা ভিক্টিমই খুনের আগে অ্যাশলীর সাথে যৌনতায় লিপ্ত হয়েছিলো। এছাড়া জা ক্লদের দেওয়া আংটি ও ডিটেকটিভকে হত্যা করা চাপাতি অ্যাশলীর ঘরেই পাওয়া যায়। এ অবস্থায় মেয়েকে বাচানোর জন্য ডাঃ প্যাটারসন ছুটে আসেন অ্যাডঃ ডেভিডের কাছে। ডেভিড সাবেক ক্রিমিনাল লইয়ার ও বর্তমানে বিজনেস লইয়ার। ডেভিড একটা বড় ঋণে ডাঃ প্যাটারসনের কাছে আবদ্ধ। কিন্তু ক্রিমিনাল লইয়ার থাকাকালীন তার আছে একটি কষ্টকর অন্ধকারচ্ছন্ন অতীত। যারফলে প্রথমে সে প্যাটারসন কেস নিতে অস্বীকার করে। কিন্তু ডাঃ প্যাটারসনের একগুয়েমির কারনে সে অবশেষে হাতে নেয় এমন এক কেস যা জেতা প্রায় অসম্ভব। কারন ইতিমধ্যেই প্রমান হয়ে গেছে খুনগুলো অ্যাশলী করেছে। কেসটা ডেভিডের জন্য জুয়াখেলার মতো। যদি সে না জিতে তবে তার ক্যারিয়ার, এতোদিনের প্ররিশ্রম, স্বপ্নের ঘর, অনাগত সন্তানের ভবিষ্যত সব হুমকির মুখে পড়ে যাবে। ওদিকে তার জাজও একটা বিশেষ কারনে তার ওপর ক্ষেপে আছে যারফলে আদালতে ডেভিডের অবস্থা আরো কঠিন। সামনে এগোবার জন্য ওর হাতে একটাই রাস্তা। আর তা হচ্ছে অ্যাশলীর একটি বিশেষ রোগকে জাজ ও জুরীদের সামনে প্রমান করা। বের করে আনা অ্যালেট ও টনিকে। ডেভিড বুঝতে পেরেছে কে এই তিনজনের মধ্যে মূল খুনী। কিন্তু খুনীকে শাস্তি দিতে গেলে একসাথে সবাইকেই মরতে হবে। কি হতে পারে অ্যাশলীর সেই রোগ? কে আসল খুনী? কেনো খুনীকে পাকড়াও করা গেলেও ফাসিতে ঝোলানো যাচ্ছেনা? অ্যাশলী কি ফেসে যাবে এই খুনগুলোতে? এদিকে অ্যাশলীর জীবনের কিছু ভয়ানক কষ্টকর অতীত শেষদিকে বের করতে পারে ডেভিড ও ড. গিলবার্ট কেলার। এই ভয়ংকর অতীতই তিন মেয়েকে এক সূতোয় গেথে দিয়েছে এবং লুকিয়ে রেখেছে আসল ক্রিমিনালকে। কি হতে পারে সেই অতীত? এই অতীতই কি তবে কাজ করছে খুনগুলোর মোটিভ হিসেবে? কে এই ভয়ানক সাইকো কিলার? সিডনী শেলডনের বই বরাবরের মতোই অসাধারন হয় তবে এই বইটা তার অন্য সমস্ত বইয়ের চেয়ে আলাদা। এটা অসাধারনের চেয়েও অনেক বেশী। একটার পর একটা থ্রিল পাঠককে চুম্বকের মতো আটকে রাখবে বইয়ের সাথে। তবে সিডনী শেলডন সবসময় থ্রিলারের সাথে এমন সব মানবিক দিক তুলে ধরেন যা আমাদের সমাজে হয়তো অহরহ ঘটছে কিন্তু আমরা জানছিনা। এমনই এক ব্যাপার তুলে ধরেছেন তিনি তার এই বইতে। সেই মানবিক ব্যাপারটাই এই বইয়ের মূল উপজীব্য। যখন পাঠক সেই মানবিক অংশে প্রবেশ করবেন তখন তিনি কাদঁতে বাধ্য হবেন। কারন লেখক বাস্তবতার আলোকে লেখা এই উপন্যাসে করুণ এক নীরব অত্যাচার তুলে ধরেছেন। বইটা থ্রিল দিয়ে শুরু হলেও শেষ হয় ঘৃণা ও কষ্টের মধ্যে দিয়ে। ভালোবাসা কি, পারিবারিক সর্ম্পক কি এসব প্রশ্ন তখন মনের মধ্যে তুলে ধরে। পাঠক মনের মধ্যে বিরাট একটা ধাক্কা খাবেন বইটার শেষ অংশে। আমি সিডনী শেলডনের যতো বই পড়েছি তারমধ্যে এটার মতো ধাক্কা আর কোনো বইয়ে খাইনি। আমি আশা করবো সবাই বইটা পড়বেন কারন এই বই আপনাকে অনেক কিছু শেখাবে। সবার প্রতি হ্যাপি রিডিং। রেটিং- ৫.০০/৫.০০
Thriller
1
মিসির আলি মানেই রহস্য! রহস্যময় একটি গল্পের সমাধান করবেন স্বয়ং মিসির আলি। এমনটাই ধারণা মিসির আলি পাঠকদের। এই গল্পটিতেও তার ব্যতিক্রম নয় নি! বরাবরের মতই এক অজানা রহস্য উকি দিচ্ছে মিসির আলির ছোট্ট জানালায় আর সেই রহস্যের সমাধান খুঁজতে অবিরাম পরিশ্রম করে যাচ্ছেন মিসির আলি। তবে ইন্টারেস্টিং কথা হচ্ছে, মিসির আলির রহস্য খুঁজে পাওয়ার দিক গুলো! প্রতিটি গল্পে হুমায়ুন আহমেদ নতুন নতুন পন্থায় রহস্য নিয়ে আসেন গল্পের মাঝে। এই গল্পে কিভাবে আনলেন? পন্থাটা কি? আসুন! দেখে আসি। মাছি ভনভন করছে মিসির আলির সামনে। রাজ্যের বিরক্তি তার মাথায়। নিজেকে মনে হচ্ছে কাঁঠাল! তার উপর আবার সামনে এক অচেনা মেয়ে বসে গল্প শোনাচ্ছে! মিসির আলির বিরক্ত লাগলেও চুপচাপ কোনো রকমে শুনে যেতে লাগলেন। মেয়েটি থাকতে চাইলেন এবং মিসির আলিও অনুমতি দিলেন। কিন্তু খানিক বাদেই তাকে চলে যেতে বললেন মিসির আলি। যাওয়ার সময় তার সাথে আনা ব্যাগ, জিনিসপত্র রেখে গেলেন। দশদিন পর‌ও যখন মেয়েটির দেখা নেই তখন মেয়েটির ফোন নাম্বার লেখা কাগজ হাতে নিলেন এবং যা দেখলেন তাতে আশ্চর্য না হয়ে পারলেন না! কিন্তু কি লিখা ছিল এই কাগজে? ব্যাগ থেকে পেলেন এক চিঠি! পড়তে শুরু করলেন মিসির আলি। হারিয়ে যেতে থাকলেন চিঠির পাতার প্রতিটি অক্ষরে! ঠিক কি লিখা সেই লম্বা চিঠিতে? যা পড়ে মিসির আলি সাহেব এতটা চিন্তিত হয়ে পড়লেন!ব‌ইটি পড়ে অসম্ভব ভালো লেগেছে। গল্পের মধ্যে একঘেয়েমি লাগার কোনো কারণ নেই। গল্পের মাঝে মাঝে লেখক এমন সব মজার কিছু কান্ড ঘটালেন যা পাঠকের একঘেয়েমি কাটিয়ে সামনে যাওয়ার প্রেরণা যোগায়! আর সবচেয়ে আশ্চর্যজনক চরিত্র হচ্ছে, "শরীফা"। এই কাজের মেয়েটির মাধ্যমেই হয়তো মিসির আলি চেষ্টা করছে রহস্যের সমাধান খুঁজতে! গল্পের শেষে কিছু ইন্টারেস্টিং চরিত্র আসতে পারে! এই গল্পের ফাকে লেখক অনেক মূল্যবান কিছু পাঠকের সামনে তুলে ধরেছেন যা সত্যিই মহা মূল্যবান! অনেক কিছু শেখার আছে এই গল্প থেকে! আমি অনেক কিছু শিখতে চেষ্টা করেছি এই গল্প থেকে! তাহলে আর দেরী না করে গল্পের গাঢ় রহস্যের সমাধান খুঁজতে শুরু করুন! আর জানতে চেষ্টা করুন সেই বিখ্যাত চরিত্র মিসির আলি সাহেবের রহস্য উন্মোচন করার প্রক্রিয়া, যিনি বারবার তাঁর সামর্থ্যের পরিচয় দিয়ে যাচ্ছেন বিভিন্ন জটিল সমস্যা সমাধান করার মাধ্যমে।মেয়েটির আসল নাম জানা গেল বেশ অদ্ভুত এক কায়দায়! ছোট বেলায় মা মারা গেছেন বাবার গাড়ি চালানো অবস্থায়। বাবা আরেকটা বিয়ে করলেন। তিনিও মারা গেলেন! একাকী জীবন কাটাতে লাগলো ছোট্ট মেয়েটি। ছোট মা মারা গেছে বহু আগেই কিন্তু সে ছোট মার সাথে দিব্যি গল্প করে! কিভাবে সম্ভব? আদৌ সম্ভব? নাকি সব চশমা পড়া দুনিয়ার গোলক ধাধা? ছোট মা কি মারা গিয়েছিল? বাড়িতে আসল ছোট একটি কাজের মেয়ে "শরিফা"। বয়স সবে মাত্র তের! গল্প করে মেয়েটির সঙ্গে। শরিফাকে বিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাকে তুলে নেবে আগামী বুধবার। কিন্তু তুলে নেওয়ার আগের দিন শরিফার আকস্মিক মৃত্যুতে দিশেহারা পরিবার! এই শরীফার কারণেই পরিবারের নতুন সদস্য নীতু আন্টি অস্বাভাবিক অর্থাৎ পাগল হয়ে গেল! কিন্তু কিভাবে? শরীফা তো মরেই গেছে! তাহলে নীতু কেন পাগল হল? রহস্যটা কোথায়? মেয়েটির মা কি আসলেই মারা গিয়েছিল? নাকি সব মিসির আলিকে বোকা বানানোর কৌশল? সকল রহস্যের সমাধান দেবে মিসির আলি সাহেব।
Fiction
0
পৃথিবীজুড়ে বিভিন্ন দেশের সরকারি গোপনীয় কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যেই ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি বা গোয়েন্দা সংস্থার সৃষ্টি। গোয়েন্দা সংস্থার কাজ হলো নিজ দেশের নিরাপত্তার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য সংগ্রহ করা, গবেষণা করা এবং দেশ ও দেশের নাগরিকদের নিরাপদে রাখা। বিভিন্ন গোপনীয় তথ্য প্রাপ্তি নিশ্চিতকরণ, গুপ্তচরবৃত্তি, সরকারকে জাতীয় নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়াদি সম্পর্কে তথ্য প্রদান, এমনকি প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে দেশের স্বার্থরক্ষার্থে হত্যাকাণ্ডের মতো কাজও করে থাকে এ সংস্থাগুলো! এসব সংস্থার মধ্যে উল্লেখযোগ্য এজেন্সির কথা জানাবার চেষ্টা করেছেন লেখক। স্বল্প পরিসরে বেশ ভালো তথ্য দিয়েছেন। তবু আরও কিছু বিস্তারিত জানালে মন্দ হতো না।
Political
3
ওপার বাংলার লেখক সঞ্জীব চট্টোপাধ্যায়ের।অসাধারন তাঁর লেখনী।খুব চমতকার ভাবে সহজ সাবলীল ভাষায় ফুঁটিয়ে তুলেছেন সাধারন মধ্যবিত্ত পরিবারের জীবনকাহিনী।একটি সংসারে মা যে সব ।দুহাতে আগলে রাখেন সব পরম মমতায় স্নেহে।ছোট্ট ছেলে নাম বুড়ো তার মা বাবাকেই নিয়ে জীবন।বইটির পরতে পরতে রয়েছে শিক্ষনীয় বিষয়।জীবনসম্পর্কীত অনেক সূক্ষাতিসূক্ষ বিষয়।নিজেদের অভাব অনটনের সংসারেও আর্থিক সহায়তায় এগিয়ে যেতেন অন্যের বিপদে।ছোট্ট ছেলেকেও তাই শিক্ষা দিতেন।বইটি পড়তে নিলেই এমনভাবে ডুবে যাই যেন আমার সামনেই সমস্ত ঘটনা ঘটছে।লেখকের অনেক কথাই খুব মনে ধরেছে যেমন বাবা ছেলেকে বলছেন- সত হতে হবে কাজে ও কথায়।নিজেকে ধরতে আর ছাড়তে শিখতে হবে। মন হল ঘুড়ি সুতা হল ইচ্ছে আর বিচার লাটাই।মন ঘুড়ি উড়তে চাইছে বাড়তে চাইছে।ইচ্ছে সুতা ভল্ভল করে ছাড়ছি।কোন আকাশে বাতাসে ভেসে গিয়ে কোন বিপাকে পড়বে কেউ জানেনা।অমনি বিচারের লাটাই ঘুরিয়ে তাকে টেনে আনো।তারপর আরো আছে মন হবে দৈত্যের মতো পাহাড়ের মতো গর্জন গাছের মতো বিশাল।জ্ঞান সত চিন্তা সাধনা সতসংগ এই হল সুন্দর হবার পথ।কী সুন্দর কথা।মন জুড়িয়ে যায় প্রতিটি শব্দে।যার যেমন চিন্তা তার জীবনও সেই রকম হবে।লেখক বুঝিয়েছেন চিন্তা চেতনা মনন দায়ী সবকিছুর জন্য।আমাদের চিন্তাচেতনা বলিষ্ঠ প্রভাব ফেলে আমাদের এই জীবনে।শত দারিদ্রতার মাঝেও বুড়োর বাবা গাছের চারা কিনে আনতেন।গাছ ভালোবাসতেন।ছেলেকেও সেই শিক্ষা দিতেন।সবসময় চারদিকে তাকালে যেন চিরসবুজ দেখতে ।সবুজের মাঝে থাকলেই চিরসবুজ থাকা যায়।ঘরে রয়েছে পোষা কুকুর বিড়াল।আহ কি শান্তির স্নিগ্ধ ঘর।পড়তে পড়তেই ভেসে উঠে সমস্ত পরিবেশ চোখের সামনে।লেখক সার্থক পাঠককে নিয়ে যেতে পেরেছেন তার বর্নিত জগতে। সবকিছুই ভালোই চলছিলো বুড়োর।বিপত্তি ঘটে মায়ের মরণব্যাধি ক্যান্সারে।মায়ের সাজানো সংসার তছনছ হয়ে যায় ,শত দারিদ্রতাও যা কাবু করতে পারেনি।মায়ের অকাল চলে যাওয়ার কাছে হার মানে সবমা মৃত্যুর আগে লিখে রেখে যান ছেলেকে একটি চিঠি।যার ভাষা অনবদ্য স্নেহের বুড়ো, আর কয়েকদিন পরেই আমি চলে যাব।দূরে বহু দূরে। আমার অনেক সাধ ছিল, কত কী করার ছিল।খেলা না ফুরাতে খেলাঘর ভেঙ্গে গেল।জীবনে একবারই দেখা হয়। তোমার সঙ্গে আর দেখা হবে না।তুমি বড় হও।যত পারো বেড়ে ওঠো। আমি নেই বলে তোমার বড় হওয়া যেন আটকায় না। আমার জন্য মন খারাপ কোরো না। আমি নেই বলে আরো বেশি করে থাকব। তুমি আমাকে দেখতে পাবেনা।কিন্তু আমি তোমাকে দেখব। তোমার বাবা যেন এইরকম শিশুই থাকেন।বোলো তাঁকে।যেখানে আমি যাচ্ছি সেখানে তোমরা থাকবে না এইটাই আমার দুঃখ। যাওয়াটা এইরকম আগে পরেই হয়ে যায়।যে খেলার যা নিয়ম! সবসময় সোজা পথে চলবে।সমস্ত ব্যাপার বুদ্ধি দিয়ে নয় হ্রদয় দিয়ে বোঝার চেষটা করবে।রোজ আয়নার সামনে কিছুক্ষন দাঁড়াবে।নিজের মুখ দেখবে স্থির নজরে।যখনই দেখবে চোখের উজ্জ্বলতা কমছে তখনই চিন্তার দিকে নজর দেবে।চিন্তাই মানুষ। একা থাকবে না।কাজকে সংগী করবে।বাবার মতো গাছপালা জীবজন্তু পশুপাখীকেই বন্ধু করবে।সবুজের ঘরে থাক্লে মানুষ চিরসবুজ থাকে।দিতে শিখবে নিতে নয়।আমি আমি করবে না। আমি বলে কিছু নেই।সবই তুমি।ভেতরটাকে বড় করলে বাইরেটা বড় হয়।নকল থেকে আসল বেছে নিতে শেখো।তোমার দাদির বাড়িকে অপবিত্র কোরো না।প্রতিষ্ঠা মানে সত্যের প্রতিষ্ঠা। এশ্বর্য হল চরিত্র। যুদ্ধ হল নিজের সঙ্গে। জয় হল নিজেকে জয়। সব সময় মনে রাখবে তুমি কোন পরিবারের ছেলে।পিতা মাতা পিতামহকে ভুলোনা। বিদায়।অনেক অনেক ভালোবাসা।জল নয় আগুন।-ইতি তোমার মা।
Childrens-Book
2
‘কঙ্কাল ঘর’ মোশতাক আহমেদ এর লেখা শিশিলিন কিশোর গোয়েন্দা এর একটি বই । জন্ম ৩০ ডিসেম্বর ১৯৭৫, জেলা ফরিদপুর । তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি ডিপার্টমেন্ট থেকে এম ফার্ম ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পরবর্তীকালে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইবিএ থেকে এমবিএ এবং ইংল্যান্ডের লেস্টার ইউনিভার্সিটি থেকে ক্রিমিনোলোজিতে মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেন। কর্মজীবনে তিনি একজন চাকরিজীবী । তাঁর উল্লেখযোগ্য সাহিত্যকর্মের মধ্যে রয়েছে- সায়েন্স ফিকশন ,ভৌতিক ,গোয়েন্দা এবং অ্যাডভেঞ্চার, প্যারাসাইকোলজি ,ভ্রমণ উপন্যাস, উপন্যাস , স্মৃতিকথা ,মুক্তিযুদ্ধ । তার লেখালেখির স্বীকৃতি স্বরুপ তিনি কালিকলম সাহিত্য পুরষ্কার, ছোটদের মেলা সাহিত্য পুরষ্কার সহ আরো অনেক পুরষ্কার পেয়েছেন । তার লেখা কঙ্কাল ঘর বইটি প্রথম প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে । বইটি প্রকাশিত হয় কথাপ্রকাশ প্রকাশনী থেকে এবং এর প্রকাশক জসিম উদ্দিন । প্রছদ করেছেন নিয়াজ চৌধুরী তুলি । উপন্যাসের প্রধান চরিত্র লেনিন । সে তার বন্ধু রাশেদের মামাবাড়িতে বেড়াতে এসে দারুন এক রহস্যের সন্ধান পায় । এক মৃত ব্যক্তির লাশ কবর থেকে উঠিয়ে দেখা যায় যে সেই লাশের কোনো হাড় নেই । পরে খোজ নিয়ে জানা যায় যে এইরকম ঘটনা আরো অনেক ঘটছে । সে তখন সভাবগত কারনেই সে রহস্যের গভীরে যাওয়ার চেষ্টা করে এবং বুঝতে পারে বিশাল রহস্যের ভেতরে সে চলে যাচ্ছে । এক পর্যায়ে সে আটকা পড়ে কঙ্কাল ঘরের মধ্যে । মুক্তির জন্য মরিয়া হয়ে ওঠে সে । বুঝতে পারে যে তার মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে । ড্রামের পানি গরম হতে শুরু করেছে । এক সময় তা বাড়তে বাড়তে তার যন্ত্রণাময় মৃত্যুর কারন হয়ে উঠবে । কিভাবে সে নিজেকে বাচাবে ? শেষ পর্যন্ত কি হয়েছে তার পরিনতি ? জানতে হলে পড়তে হবে অসাধারন এ উপন্যাস টি ।
Thriller
1
পৃথিবীর প্রতিটি মানুষের এক একটা করে অদ্ভুত অদ্ভুত ইচ্ছা আছে সেগুলো সবসময় পূরণ হয়না বা পূরণ হওয়ার সুযোগ থাকেনা। য়ুহা একজন কবি। সে থাকে বসবাসের অযোগ্য এই পৃথিবীতে তার মাথায় প্রতিনিয়ত একটা কথাই খেলে বেড়ায় "এই পৃথিবী কি আগের অবস্থায় আবারো কোনোদিন ফিরে যাবে?"। এখন যেখানে প্রায় সব কিছুই যান্ত্রিক বলা চলে আর এর মধ্যেই মানুষকে নিজেদের সুখ-শান্তিকে খুঁজে নিতে হয়। তবে এই যান্ত্রিক পৃথিবীতে সব ঠিক মত পেলেও আসল পৃথিবীতে বেঁচে থাকার সেই অনুভূতিটা কখনো পাওয়া যায়না। য়ুহা নিজে কবি হওয়ার দরুন সবকিছুতেই সে নিজের কবিতাকে খুঁজে ফিরে। আর তার একটা ব্যতিক্রমী ইচ্ছা হলো সে মহাকাশে যাবে। নিজের চোখে দেখবে সেই বিশাল নক্ষত্রের সমারোহ। য়ুহা মাহাকাশ অভিযানের অনুমিত পেয়েছে। সে যে মহাকাশযানে করে যাবে সেটা একটা সামরিক মহাকাশযান আর তাদের সাথে মহাকাশযানে আছে পৃথিবীর নামকরা ১১ জন বিদ্রোহী। তবে এতে করে য়ুহার কিছু যায়-আসেনা সে মহাকাশে যেতে পারলেই হলো। মহাকাশে থাকা অবস্থা য়ুহা জানতে পারে, সে যে মহাকাশযানে করে যাচ্ছে সেটার আসলে কোনো পরিচালক নেই! দূরে থাকাও "কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক" নামে একটা নেটওয়ার্ক আছে সেটা দ্বারা তাদের মহাকাশযান পরিচালিত হচ্ছে। আর সেই পরিচালকে (কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক) সবাই যার যার নিজে থেকেও বেশি বিশ্বাস করে থাকে। তবে য়ুহা কোনো ভাবেই বিশ্বাস করতে পারছেনা। যার কারণে তার বিশ্বাস ফিরিয়ে আনার জন্য তাকে একটা গোলক দেয়া হয়েছে। আর সেটার স্থিরতাই প্রমান করবে কোয়ান্টাম নেটওয়ার্ক এর প্রতি বিশ্বাসযোগ্যতা। অথচ সবার অগোচরে (য়ুহা সামনে থাকলে) সেটা স্থির থাকেনা! তার মানে তাদের নিয়ে খেলছে অন্যকেউ? তা না-হলে য়ুহার সামনে গোলকটি স্থান পরিবর্তন করে কিন্তু সেটাকে সে কাউকে দেখাতে গেলেই সেটা আবার স্থির হয়ে যায়। এর মানে অন্যকারো হাত এর পিছনে নিশ্চই আছে? কোনো কিছু বোঝে উঠার আগেই মহাকাশযানটা এপাশ-ওপাস দুলতে শুরু করেছে। এই মুহূর্তে প্রায় সবার মনেই আর কোনো সন্দেহ নেই যে এই কাজটা মহাকাশের কোনো মহাজাগতিক প্রাণীর দ্বারা হয়েছে। এখন সবার সামনে একটা পথ খোলা আছে আর সেটা হলো মহাকাশযানটা গুড়িয়ে দেয়ার পাশাপাশি মহাকাশযান এ অবস্থানরত সবাইকে হত্যা করা। এতে করে মহাকাশযানে ব্যবহার করা বিপুল প্রযুক্তি মহাজাগতিক প্রাণীদের কাছে চলে যাবেনা। এখন তাহলে করনীয় কি? সবার জীবন কি এভাবেই শেষ হয়ে যাবে? নাকি খুলে যাবে নতুন কোনো সম্ভাবনার দুয়ার? এইসব জানতে হলে পড়তে হবে এই চমৎকার বইটি। মতামতঃ বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী বেশি পড়া হয়নি তবে এই বইটা পড়ে খারাপ লেগেছে এটা মোটেও বলা যাবেনা। তবে বইটার সবটাতেই চরিত্র গুলোর মধ্যে ছেলেমানুষি ব্যাপারটা বড্ড বেশি লক্ষণীয় ছিল। মাঝে মাঝে সেটা বিরক্তিকরও মনে হয়েছে। এসব বাদ দিলে বইটা বেশ সুখপাঠ্য ছিল। যারা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী পড়তে পছন্দ করেন তারা বইটা পড়ে দেখতে পারেন আশাকরি পড়ে খারাপ লাগবেনা। হ্যাপি রিডিং
Science-Fiction
4
মানুষের মস্তিষ্কের দুটি দিক রয়েছে। একটি সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেম, অন্যটি পেরিফেরাল নার্ভাস সিস্টেম। সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমের আবার অনেক ভাগ। এর সঙ্গে রয়েছে নানা রকম কাজ। তার একটি হলো মেমোরি বা স্মৃতিশক্তি। পৃথিবীতে বেশি আইকিউ নিয়ে কেউ জন্মগ্রহণ করে না। তাদের ব্যবহারিক আচরণের ওপর নির্ভর করে বুদ্ধিমত্তা বা আইকিউ। যত চর্চা করা যাবে, আইকিউ ততই বাড়বে। সাধারণ আইকিউ ৯০ থেকে ১১০। তবে কারো কারো আইকিউ ১১০-এর ওপরে হতে পারে। পৃথিবীতে অনেক বিখ্যাত ব্যক্তির আইকিউ ১১০-এর ওপরে। এ আইকিউ বৃদ্ধির জন্য চর্চার বিকল্প নেই। চর্চার মাধ্যমেই একজন ছাত্র সাধারণ থেকে মেধাবী হতে পারে। মনে রাখতে না পারার ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে কিছু কৌশল অবলম্বন করা যেতে পারে। যেমন- আত্মবিশ্বাসটাই প্রধান: যেকোনো কাজে সফল হওয়ার প্রধান ও প্রথম শর্ত হলো আত্মবিশ্বাস। নিজের মনকে বোঝাতে হবে যে, পড়াশোনা অনেক সহজ বিষয়। আমি পারব, আমাকে পারতেই হবে। তাহলে অনেক কঠিন পড়াও সহজ মনে হবে।পড়তে হবে বুঝে-শুনে: একবার পড়েই কোনো বিষয় মনে রাখা সহজ নয়। তাই যেকোনো বিষয় মুখস্ত করার আগে বিষয়টি কয়েকবার পড়ে বুঝে নিতে হবে। তাহলে সেটা মনে রাখা অনেক সহজ হবে। যেকোনো বিষয়ে ভয় ঢুকে গেলে তা মনে রাখা কঠিন। তাই ভয় না করে প্রথম থেকে বুঝে পড়ার চেষ্টা করলে মনে রাখা কঠিন হবে না। পড়ার পাশাপাশি লেখার অভ্যাস খুবই জরুরি। পড়াশোনার জন্য উপযুক্ত সময় বেছে নিতে হবে।
Motivational
6
বইঃ আমিই মিসির আলী লেখকঃ হুমায়ুন আহমেদ মূল্যঃ১৫০ টাকা রহস্য ঘেরা একটা বই।মিসির আলী কি পারবে এই রহস্য ভেদ করে আমাদের মাঝে ফিরে আসতে? কোন এক মধ্যদুপুরে প্রফেসর মিসির আলির দরজায় লিলি নামে এক পঁচিশ ছাব্বিশ বয়সী কাজল পড়া এক মেয়ে কড়া নাড়ল।সে মিসির আলি সাহেবের কাছে একটা চিঠি নিয়ে এসেছে।চিঠিটায় তাঁকে তার স্বামীর বাড়ি পদ্মার তীরে যাওয়ার জন্য টোপ হিসেবে পাঠানো হয়েছিল।তার স্বামীর লিখা চিঠিতে পাঁচটি টোপ ছিল।টোপগুলো তার জন্য যথেষ্ট লোভনীয় ছিল।তার মাঝে একটা ছিল The Other Mind বইটি। কিন্তু তিনি টোপ গিললেন না।তবে শেষপর্যন্ত তিনি সিদ্ধান্ত নিলেন তিনি যাবেন। . অবশেষে তারা পোঁছালেন লিলির স্বামীর বাড়িতে।বাড়ির নাম 'ধ্বংসস্তূপ' হলেও দামী আসবাব আর আধুনিক ছিল সে বাড়ি আর কিছুটা রহস্যময় ও। লিলির স্বামীর বাড়ির কাছে বেশ প্রাচীন একটা কালি মন্দির আছে।কৌতুহলবশত সেখানে গিয়ে তিনি আবিস্কার করলেন মন্দিরে অধিষ্ঠান কালি মূর্তিটি দেখতে হুবহু লিলির মত।কথিত আছে,যে অশ্বিনী বাবু মন্দিরটি বানানোর পর তিনি তার তিন কন্যা কে ধড় থেকে মাথা আলাদা করে হত্যা করেছিল। . প্রিয় পাঠক,এরপর মিসির আলি সাহেবের সাথে ঘটতে লাগল রহস্যময় আর আতংকজনক কিছু কাহিনী। ব্যক্তিগত মতামতঃ বইটির টান টান উত্তেজনাময় কাহিনী আর রহস্যময় অতিপ্রাকৃত ঘটনাগুলো আপনাকে বইটির শেষ পৃষ্ঠা পর্যন্ত পড়ে যেতে বাধ্য করবে। আমার ভাল লেগেছে। আপনিও পড়ে দেখতে পারেন।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নাম-জননী জনরা-উপন্যাস ঔপন্যাসিক-মানিক বন্দ্যোপাধ্যায় পৃষ্ঠা-১৬০ মূল্য-২২০ শ্যামা ১৫ বছর বয়সে বিপত্নিক শীতলের ঘরে বউ হয়ে এলো। শীতলে কোন সন্তান ছিলো না। বিয়ের সাত বছর পর শ্যামা প্রথম মা হলো। যখন সে সন্তানের মা হবে বলে বুঝতে পারলো, ঠিক তখনি তার কিছুটা পরিবর্তন হলো। তার মনে হলো সব কিছুর থেকে এখন ভাবনা চিন্তার বিষয় হলো তার অনাগত সন্তানের ভবিষৎ। শীতল স্বামী হিসেবে মোটেও ভালো নয়। গোয়র টাইপের। তার কাছে এসবের কোন দাম নেই। তাই নিজে এগিয়ের সংসারের দায়িত্ব কাধে নিয়ে নেয়। কিন্তু শ্যামার বাচ্চাটা পৃথিবীর আলো বাতাসে বেড়ে উঠার আগেই পৃথিবী ছেড়ে চলে গেলো। ভেতর থেকে যন্ত্রণায় কিছুটা দমে গেলেও, সে আবারও সন্তানের মা হলো, এবার আর কোন বিপদ হলো না। এবার শ্যামা শুধু মাত্র শীতলের বউ নয়। সন্তানের জননীও বটে। একে একে চার সন্তানের জননী হয়ে উঠল। তবে সারাদিন সব কাজের পিছনে উদ্দেশ্য থাকতো একটাই ছেলেপুলেদের ভালো থাকা। কিসে তাদের একটু ভালো হবে। কিভাবে ভালো থাকবে তারা। নিজের সকল প্রয়োজন মাটিচাপা দিয়ে, সন্তানের ছোট ছোট ইচ্ছাপুরণের তার শান্তি। এতেই তার সুখ। সংসার এতোটা সচ্ছল না থাকলেও ছেলেপুলের ভবিষ্যৎ নিয়ে তার বেশ চিন্তা হতো। সে চিন্তাতেই তার দিন রাত কেটে যেতো। কিন্তু এই এতোটুকু সুখে ভাটা পরলো যখন তার স্বামী মালিকের টাকা চুরি করতে দায়ে জেলে গেলো। সর্বসান্ত শ্যামা তার সন্তানদের নিয়ে তার ননদের বাড়িতে আশ্রয় নিলো। এই এক কঠিন সময়। লড়াই শুরু হলো বেঁচে থাকার। সন্তানদের বাঁচিয়ে রাখার। কি করে সম্ভব হয়েছিলো একা শ্যামার পক্ষে এই কঠিন সময় পাড়ি দেবার? ব্যক্তিগত মতামতঃ মমতাময়ী মা। সন্তান জন্ম দেওয়াই যার একমাত্র কাজ নয়। সন্তানের লালন পালন করে পৃথিবীতে বসবাসের উপযোগী করে যাওয়া পর্যন্ত তার সাধনা। কি করে এই নিষ্ঠুর পৃথিবীর যাতাকল থেকে তার সন্তানকে আগলিয়ে একটু সুস্থ ভাবে বেঁচে থাকবার উপায় করতে পারবেন। এটাই থাকে তার চিন্তা ভাবনা। জননী উপন্যাসের শ্যামার গল্পটাও তেমনি। যে স্বামী কোন কাজের নয়, সেখানে তাকে মা এবং বাবা দুটোর দায়িত্বই তাকে বহন করতে হয়েছে। সাহস দেবার কেউ নেই। সাহায্য করবার কেউ নেই। সন্তানদের দুমুটো খাবার, আর ভালো থাকার নিশ্চয়তায় কি না কি করতে হয়েছে শ্যামাকে। কোন কিছুতে সে দমে যায়নি। নিরন্তন এগিয়ে চলা তার। আর এই জীবন সংগ্রাম মানিক বেশ স্পষ্ট ভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন জননী উপন্যাসে। এখানেই উপন্যাসের সার্থকতা। মানিক বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রথম উপন্যাস "জননী"। একজন বালিকার বধু থেকে জননী হওয়ার গল্প এটা। একজন মায়ের আত্মত্যাগের গল্প। বেশ ভালো লাগার একটা গল্প। ভালোবাসা, মায়া লাগাবার একটা গল্প। মায়েরা তো এমনি হয়। এভাবেই তাদের ত্যাগে সন্তান গুলো পৃথিবীতে পরিপুষ্ট হয়। শীতলের প্রতি বিরক্ত লাগাটাই স্বাভাবিক। শ্যামা চরিত্রটার প্রতি মায়া, ভালোবাসা যেমন ছিলো রাগটাও লেগেছে। তার লড়াইয়ে আমিও যেন সঙ্গী ছিলাম। একজন মায়ের লড়াই সন্তানের জন্য। দুনিয়া ভেসে গেলেও তার সন্তান যেন থাকে দুধে ভাতে। সব মিলেয়ে বেশ ভালো লেগেছে। মানিকের বর্ণনা শৈলী নিয়ে নতুন করে কিছু বলবার নেই। তার অসাধারণ এক উপন্যাস হলো "জননী"। https://www.rokomari.com/book/99715/জননী?ref=srbr_pg0_p14
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইঃ কয়েকটি মৃত্যু লেখকঃ জহির রায়হান প্রকাশনীঃ অনুপম প্রকাশনী আব্বার জায়নামাজটা কোথায়? নিয়ে এসো তো। জায়নামাজ দিয়ে কি করবে? বিস্ময়ভরা দৃষ্টিতে স্বামীর মুখের দিকে তাকালো বড় বৌ। মনসুর আলী সংক্ষেপে জবাব দিলো-- নামাজ পড়বো। সেকি! আজ হঠাৎ নামাজ পড়তে চাচ্ছো? না মানে কিছুক্ষণ ইতস্তত করলো মনসুর আলী। তার পর স্ত্রীর উপর রেগে গিয়ে চিৎকার করে উঠলো সে। তোমার ওই মুখে মুখে তর্ক করার অভ্যেসটা এখোনো গেলো না। যা বলছি তাই করো। জায়নামাজটা কোথায় আছে খুজে নিয়ে এসো। অনেক্ষন ধরে একটা বইয়ের পাতা উল্টাচ্ছেন মেঝো ছেলে আহসান কিন্তু কিছুতেই বইয়ে মন বসছে না তার। অথচ ঘুমও আসছে না।মেঝো বউ কিছুক্ষণ পাশে দাঁড়িয়ে উসখুস করে বললো-- হ্যাগো। তুমি না একটা ইন্সিওরেন্স করেছিলে? হ্যা করেছিলাম তো। কিন্তু কেনো বলো তো? না এমনি। হঠাৎ মনে পড়লো তাই তোমাকে জিজ্ঞেস করলাম। বইটা বন্ধ করে স্ত্রীর মুখের দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে রইলো আহসান। ধীরে ধীরে একটা মৃদু হাসি জেগে উঠলো তার ঠোটের কোনে। বাড়ির সেজোছেলে মকবুল একটা সিগারেট ধরিয়ে ঘন ঘন টানছে আর হিসেবের খাতা দেখছে। ছোটবউ তার পিঠের কাছে এসে দাঁড়ালো। মাথার মধ্যে হাত বুলিয়ে দিতে দিতে বললো-- কই উত্তর দিলে না? কিসের উত্তর? আমি মারা গেলে তুমি আরেকটা বিয়ে করবে তাই না??? কিন্তু এ বাড়ি এমন ছিলো না। ছেলে বৌ নাতি নাতনী নিয়ে সুখের সংসার ছিল আহমদ আলী শেখের। সেদিন রাতের সের ভয়াবহ ঘটনার আগেও সব ঠিকই চলছিল। না, কোন মৃত্যু না, এমনকি পুরো কাহিনীতে কোন মৃত্যুই নেই! তবে...! তবে কি ছিল সেই ভয়াবহ ঘটনা??? অনুভূতিঃ এমন এক ছোট্ট পরিসরেও যে এতো বিশাল রেশ সৃষ্টি করে দেয়া যায় তা জহির রায়হান ছাড়া আর কেই বা পাড়বে! বইটা হয়তো হাতে নিতেই শেষ হয়ে যাবে তবে রেশ রয়ে যাবে অনেক্ষণ।
Fiction
0
চাকরী প্রত্যাশী এবং উদ্যোক্তা হতে আগ্রহী তরুনদের জন্য একটি হাই ভোল্টেজ বই বইটি প্রথমে আর দশটি বইয়ের মতো পড়তে চেষ্টা করলাম। একটি নিরস বিষয় নিয়ে লেখা বই। পড়তে বেশ ভালো লাগছে। তাই একটু রসও পাচ্ছিলাম। ভাবলাম যাক আত্মন্নয়নমুলক একটি বইতে রস যুক্ত হয়ে খারাপ কি? কিন্তু ভাবনার জায়গাটাতে একটা বিশাল ঝাকি দেবে সেটা বুঝতে পারিনি। প্রতিনিয়ত চাকরী প্রাথীরা নানা ইন্টারভিউ দিয়ে থাকেন। সাক্ষাৎকার ভালো হওয়ার পরও চাকরী হয়না। যেখানে এমডির নিজস্ব লোক নিয়ে নেয়। সেটা না হয় আলাদা কথা। কিন্তু সব জায়গাতো আর তা হয়না। এখন কথা হলো। চাকরী হয়না কিন্তু কেন হয়না সেটাওতো কেউ বলে দেয়না। কেউ বলে না। কোথায় আমার ভুল ছিলো। না সবাই চুপ থাকলেও এই বই চুপ থাকবেনা। এই বই আপনাকে বলে দেবে। কেন আপনার চাকরি হয়না। ব্যস এটুকুই। ১০/১২ বছর লেখাপড়া করে আমরা নিশ্চই অনেক কিছু শিখেছি। এই একটা বই পড়ে না হয় এটুকুই শিখুন। এছাড়া ব্যবসায়, পেশাজীবি, ছাত্র কিংবা সাধারণ মানুষের আত্ম উন্নয়নমূলক অনেক প্রশ্নের জবাব আছে। ৫টি পর্বে ৩৫টি টপিক। প্রতি টপিকেই একএকটি গঠনমূলক স্পিচ। আর প্রতিটি পর্ব এক একটা ওয়ার্কশপের সমান। যেগুলো আমরা টাকার দিয়ে জয়েন করে থাকি। প্রতিটি পর্ব শেষে আছে একটি অনুশীলন বা মূল্যায়ন পর্বে। এখানে পাঠক নিজেই নিজের সম্পর্কে নাম্বার দিয়ে সে নাম্বার যোগ করে নিজেকে যাচাই করে নিতে পারেন। ধন্যবাদ।
Motivational
6
#BookReview বইঃ পল্লীসমাজ লেখকঃ শরৎচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় ধরনঃ চিরায়ত উপন্যাস বৃটিশ বাংলার অন্যসব গ্রামের মত ক্রমবর্ধনশীল একটি গ্রাম কুয়াপুর। গ্রামে উচ্চবর্ণের হিন্দুরের আধিক্য; পাশাপাশি আছে নিম্ন বর্ণের মালো-কৈবর্ত-জোলাদেরও বসবাস। জমিদার তারিণী ঘোষাল এবং যদু মুখুজ্যের পরিবারের বসবাস একই গ্রামে; পরস্পর আত্মীয় এবং উভয়েই উচ্চবর্ণের ব্রাহ্মণ। তাদের মধ্যে স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে দ্বন্দ্ব দীর্ঘদিনের। তারা দুজনেই গত হয়েছেন; তাদের উত্তরসূরী বেণী ঘোষাল, রমেশ ঘোষাল ও রমা মুখুজ্যে। ব্রাহ্মণ গোবিন্দ গাঙ্গুলী, পরাণ হালদার, ধর্মদাস প্রমুখ পল্লীসমাজের কর্তাব্যক্তি। জমিদার বেণী ঘোষালকে কেন্দ্র করে সংঘটিত হয় তাদের যতসব কুকর্ম। ক্ষয়িষ্ণু সামন্ততান্ত্রিক ভূস্বামীপ্রধান সমাজে তাদেরই প্রাধান্য; দেখা যায় সমাজে তারা আবার পরজীবীও বটে। জমিদার আর সাধারণ মানুষের দান-দক্ষিণার উপর নির্ভর করে তাদের বেঁচে থাকা। স্বার্থের কারণে তারা পদে পদে রূপ পরিবর্তন করে; সকালে তারিণী ঘোষাল পরিবারের পক্ষে তো বিকালে যদু মুখুজ্যের পরিবারের পক্ষে। প্রতিনিয়ত'ই গ্রামে জমিদারে জমিদারে চলে বিভিন্ন বিষয়াদি নিয়ে কুৎসিৎ দ্বন্দ্ব। তাদের উৎপীড়ন ও অত্যাচারের শিকার হয় প্রজারা। জায়গা-জমি, গাছকাটা, মাছধরা, স্কুল প্রতিষ্ঠা, রাস্তা সংস্কার ইত্যাদি নিয়ে কথায় কথায় চলে লাঠালাঠি, হয় মামলা-মোকদ্দমা। ব্রাহ্মণ গোবিন্দ গাঙ্গুলীর মতো কুটিল চরিত্রের লোকেরা বিভিন্ন পক্ষকে বিভিন্নভাবে উত্তেজিত করে তুলে; এভাবেই এক পক্ষ অন্য পক্ষকে শায়েস্তা করতে সর্বশক্তি নিয়ে ঝাপিয়ে পড়ে। দিনের পর দিন চলে একে অন্যকে জব্দ করার জন্যে নিরন্তর চেষ্টা; জাল, জুয়াচুরি, মিথ্যা সাক্ষ্য কোনো কিছুতেই তারা পিছপা হয় না। এক সময় উভয় পক্ষই আর্থিকভাবে নিঃস্ব হয়ে পড়ে; তাদের সহায় সম্পদ ঋণের দায়ে আটকা পড়ে জমিদার কিংবা গ্রামের সুদখোর মহাজনদের জালে। সমাজপতিরা যেমন নিষ্ঠুর তেমনি হীন লোভী এবং স্বার্থপর। শরৎচন্দ্র এই বিবাদ-বিসংবাদকে পল্লীসমাজ উপন্যাসের কেন্দ্রে রেখে তুলে ধরেছেন সেই সময়কার সমাজকে। তিনি দেখিয়েছেন যে, প্রায় শত বৎসর পূর্বে বাংলাদেশের গ্রামগুলি দারিদ্র, উৎপীড়ন, পরশ্রীকাতরতা, ভন্ডামি, বঞ্চনা, হতাশা, বিরোধ, কুসংস্কার, অর্থনৈতিক শোষণের নীরন্ধ্র অন্ধকারে ডুবে ছিল। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ- লেখার মধ্যে দিয়ে বাস্তবতার সিনেমা দেখানো শরৎচন্দ্রের দ্বারাই সম্ভব । শরৎচন্দ্রের লেখা মানেই এক নীরব ব্যথা এক অদ্ভুত অনুভূতি যা পাঠকের হৃদয়কে ব্যাথায় ভরিয়ে দেয় । ❤️📖📕
Fiction
0
জেমস রোলিন্স মানেই অ্যাকশন, অ্যাডভেঞ্চার আর থৃলার। এই তিন ক্যাটাগরির বরপুত্রও বলা যায় তাকে অনায়াসেই। হাজার বছরের পুরানো মিথ/ইতিহাসের সাথে আধুনিক বিজ্ঞানের যোগসূত্র আর সাথে গিল্ড কিংবা হাজার বছরের লুকায়িত গুপ্তসংঘ কিংবা কাল্টের ক্ষমতা দখলের ব্যাপকতা আর এদের প্রতিরোধ করার জন্য আছে সিগমা ফোর্স। হ্যা জেমস রোলিন্সের লেখা অন্যতম জনপ্রিয় সিরিজ সিগমা ফোর্স নিয়েই কথা বলতে চাচ্ছিলাম। প্রথম পর্ব 'স্যান্ডস্টর্ম' এর মুগ্ধতা নিয়ে পড়ে ফেললাম সিরিজের দ্বিতীয় পর্ব বা বই 'ম্যাপ অফ বোনস'। এটাই জীবন....খুঁজে যাওয়া....সত্যের সন্ধান করা....অন্ধকার থেকে আলোতে.....!! ধর্মীয় মিথ, অত্যাধুনিক বিজ্ঞান, অ্যাডভেঞ্চার আর দুর্দান্ত অ্যাকশনের এক রোলার কোস্টার রাইড হলো 'ম্যাপ অফ বোনস'। অত্যাধুনিক বিজ্ঞান, প্রাচীন মিথ, খ্রিষ্টীয় উপাখ্যান, দুর্দান্ত অ্যাকশন আর দুর্ধর্ষ অ্যাডভেঞ্চার নির্ভর এই বইয়ের প্রেক্ষাপট গড়ে উঠেছে পুরানো চার্চ, ক্যাথেড্রাল, আলেকজান্দ্রিয়ার সমুদ্রতল বা শতাব্দী আগে ধ্বংস হওয়া আলেকজান্দ্রিয়া বাতিঘর অথবা হারিয়ে যাওয়া মহাবীর আলেকজান্ডার দি গ্রেটের সমাধীসৌধ থেকে শুরু করে সেন্ট পিটার ব্যাসিলিকার তলা হয়ে ফ্রান্সের এভিগননে ঐতিহাসিক টেম্পলারদের নির্মিত গথিক দুর্গ খ্যাত পাপাসির প্রাসাদের অভ্যন্তরের অতলে গোপন গুপ্তধন পর্যন্ত। এর সাথে আরো যুক্ত হয়েছে যীশুর দুই শিষ্য পিটার আর টমাসের দ্বন্দ্ব কিংবা সেই আর্ক অফ কভিনেন্টের অমূল্য পাউডার অথবা হাজার বছর পুরানো অ্যালকেমিস্ট কাল্টের বিজ্ঞান চর্চা সূত্রপাত অথবা ক্ষমতালোভী ড্রাগন কোর্টের মতো গুপ্ত সংঘ। কাহিনীচিত্র : গল্পের শুরুটা আপনাকে নিয়ে যাবে এখন থেকে আরো কতক শতক আগে আই মিন বারশো শতকের শুরুতে যেখানে আপনি জানতে পারবেন খ্রিষ্টীয় উপাখ্যানের অন্যতম সেরা তিন ম্যাজাইয়ের হাড়ের গুপ্তপাচার সম্পর্কিত ঘটনা। যেখানে একদল গুপ্তসংঘ চায় সেই তিন ঐতিহাসিক ম্যাজাইয়ের হাড় চুরি করে নিজেদের আয়ত্ত করতে আর চার্চ চায় নিজেদের ধর্মকে বাচিয়ে রাখতে। এই ঘটনা মাথায় রেখে আপনি একটানে চলে আসবেন আধুনিককালে জার্মানের কোলন শহরের এক নামকরা প্রাচীন ক্যাথেড্রালে যেখানে একদল মানুষ প্রার্থনারত অবস্থায় খুবই অস্বাভাবিকভাবে মারা যায়। একদল সন্ত্রাস মঙ্ক সেজে এসে রীতি অনুযায়ী রুটি আর ওয়াইনের মধ্যে কিছু একটা মিশিয়ে প্রার্থনারত লোকদেরকে খেতে দেয় যার ফলশ্রুতিতে এক আশ্চর্যজনক শক্তির প্রভাবে তাদের মৃত্যু হয় এদের মধ্যে যারা রুটি আর ওয়াইন খায় নি তাদের নৃশংসভাবে গুলি করে হত্যা করে। আর যাওয়ার সময় সোনায় মোড়ানো তিনটা কফিন ফেলে রেখে নিয়ে যায় তার ভিতরে থাকা তিন ম্যাজাইয়ের তিনটা হাড়। তারা কারা কি চায় আর কেনইবা এতগুলো লোককে নৃশংসভাবে খুন করলো এসবের কোন কিছুই কেউ জানে না। কোলনের এই ম্যাসাকার ঐতিহাসিক এক ঘটনার দিকেই ইঙ্গিত দেয়। তদন্তের দায়ভার পড়ে সিগমা ফোর্সের অন্যতম সেরা সৈনিক আর বৈজ্ঞানিক কমান্ডার গ্রেসন পিয়ার্স। আর তার সাথে যুক্ত হয় ক্যাট ব্রায়ান্ট আর মঙ্কের মতো দুর্ধর্ষ সৈনিক। একইসাথে এই তদন্তের সাহায্যে এগিয়া আসে এসপানিওজ এজেন্ট মগসিগনর ভেনোরা আর তার ভাস্তি ক্যারিবিয়ানি ফোর্সের লেফটেন্যান্ট র‍্যাচেল। এতবড় ম্যাসাকার অথচ কোন ক্লু'ই খুঁজে পাওয়া যায় না। অনেক পরীক্ষা নিরীক্ষা শেষে কমান্ডারের দলের সবার সহযোগিতায় ক্লু মেলে ওই ম্যাজাইয়ের হাড়ে এমন কোন বস্তু ছিলো যা এক আশ্চর্যরকম শক্তির সৃষ্টি করে। আর এই পাউডারটা বাইবেলে বর্ণিত ঐতিহাসিক মান্না পাউডারের দিকেই ইঙ্গিত দেয় যা যুগ যুগ ধরে হোয়াইট পাউডার কিংবা ফিলোসফার'স স্টোন নামে ব্যাপক পরিচিত। আর এই পাউডার যদি একবার সেই সন্ত্রাস দল তথা ড্রাগন কোর্টের হাতে নাগালে আসে তাহলে কোলনের ম্যাসাকারটা হয়তো পুরো বিশ্বজুড়েই হবে। এরি মধ্যে ভেরোনা থেকে শুরু করে টিমের সব মেম্বারের উপরই ড্রাগন কোর্টের অ্যাটাক আসে। এমনকি কমান্ডার গ্রেসন পিয়ার্সকেও কেউ একজন একটা ডাবল ড্রাগন পেন্ড্যান্ট দিয়ে যায় যার মানে দাঁড়ায় শত্রুপক্ষ তার অপেক্ষায়। ইতিহাসবেত্তা মনসিগনর ভেরোনা তার টিমকে জানায় বাইবেলের একটি শ্লোকের ব্যাপারে যা একটি ধাধার মতো। ধাধা সমাধানের লক্ষ্যে ওরা ছুটে যায় ভ্যাটিকানের সেন্ট পিটার ব্যাসিলিকার অভ্যন্তরে কিন্তু ড্রাগন কোর্টের সাথে যৌথ গঠিত গিল্ড টিমের কাছে ধরা পড়ে যায় কমান্ডার গ্রেসন পিয়ার্স আর তার টিম। গিল্ডের সেই মেয়েটি ডাবল ড্রাগন পেন্ড্যান্ট দেয়া শিচান কমান্ডারের কপালে বন্ধুক ঠেকায় ড্রাগন কোর্টের রাউলের নির্দেশে কিন্তু বরাবর কপালে গুলি না করে ওকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করে কিন্তু কেন...? টিমের সবার সহযোগিতায় সবাই পালিয়ে ছুটে যায় মিশরে যেখানে শায়িত আছেন বীরদের বীর আলেকজান্ডার দি গ্রেট। কেননা বাইবেলের সেই স্লোকের সাথে আলেকজান্ডারের কথা খুব ওতপ্রোতভাবে জড়িত। ওরা ছুটে যায় পানির নিচের দুর্গের খোজে যেখানে শায়িত আছেন আলেকজান্ডার দি গ্রেট। ওরা খুজে পায় সমাধি সেই সাথে খুজে পায় একটা সোনার চাবি যা পরবর্তী শ্লোকের সমাধানে অবশ্যই দরকার আর সমাধানটা আছে ফ্রান্সের এভিগননে পাপাসির প্রাসাদে। কিন্তু দেরী হয়ে গেছে অনেক দেরী। এরিমধ্যে র‍্যাচেল আর মঙ্ককে ধরে নিয়ে গেছে ড্রাগন কোর্ট এর সাথে র‍্যাচেলের নানুকেও তুলে এনেছে ওরা টর্চারের জন্য। কিন্তু এরিমধ্যে ভেরোনা আর ক্যাট ফ্রান্সের উদ্দেশ্যে চলে গেছে ধাধার সমাধানটা করতে। রাউল র‍্যাচেলের মুখ থেকে কথা বের করার জন্য মঙ্ককে টর্চার করে ওর হাত কেটে ফেলে। র‍্যাচেল সহ্য করতে না পেরে ও যা জানে তা কিছুটা বললেও নানুর টর্চার টেবিলেই একেবারে আগাগোড়া পুরোটাই বলে দেয় ড্রাগন কোর্টকে কিন্তু এর পরই র‍্যাচেল জানতে পারে ওর নানুও এই ড্রাগন কোর্টের মেম্বার আর র‍্যাচেলের সাথে আগে থেকেই রাউলের বিয়ে ঠিক হয়ে আছে যা ড্রাগন কোর্টের বংশধারা দরে রাখবে কিন্তু র‍্যাচেল তো এরিমধ্যে দুই দুইবার তার জান বাচানোর জন্য কমান্ডার গ্রে কে তার মন দিয়ে বসে আছে। আর রাউল ওদিকে র‍্যাচেলকে নিয়ে স্বপ্নে বিভোর যে কোন মূল্যেই র‍্যাচেলকে চাই রাউলের। গ্রে কি পারবে র‍্যাচেলকে রাউলের থেকে মুক্ত করে নিজের করে নিতে...? ওদিকে, ফ্রান্সের পোপের প্রাসাদের নীচেই খুজে পাওয়া যায় হাজার বছরের হারিয়ে যাওয়া ঐতিহ্য আর ইতিহাস। কিন্তু ড্রাগন কোর্টের লোকেরা এসে হাজির। ভেরোনার কলিগ আলবার্তো মেরান্ডি আর র‍্যাচেলের বস জেনারেল র‍্যান্ডিও ওদের সাথেই যুক্ত। ড্রাগন কোর্টের আদেশেই র‍্যাচেল আর কমান্ডার গ্রে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটা শুরু করামাত্রই ভুমিকম্পের মতো কম্পন শুরু হয়। এক অদ্ভুত আশ্চর্যজনক শক্তির প্রভাব ওরা টের পায়। পায়ের নিচে থাকা গ্রানাইটের ব্লকগুলো অনেক জোড়ে কাঁপতে থাকে। টাল সামলাতে না পেরে ড্রাগন কোর্টের এক সৈনিক পড়ে যায় কাচের ব্লকের উপর কিন্তু সাথে সাথে দেহটা পুড়ে ছাই হয়ে যায়। সবার কোলনের ম্যাসাকারের কথা মনে পড়ে যায়। এই পাউডারের ক্ষমতা সম্পর্কে সবাইই টের পায়। কিন্তু ভেরোনার পেটে গুলি চালিয়েছে রাউল ওদিকে মঙ্ক, ক্যাট আর শিচানকে আটকে রেখেছে ড্রাগন কোর্টের গার্ডরা। আর এদিকে র‍্যাচেল আর গ্রে যেখানে দাঁড়িয়ে আছে সেখানের ব্লকগুলোর চারিপাশে কাচের ব্লক যেখানে সাক্ষাৎ মৃত্যু অবধারিত। গ্রে জানে এখন ওদের চাবিটা দিয়ে দেয়া ছাড়া আর কোন উপায় নেই। আর চাবিটা দিয়ে দেয়া মানে পৃথিবী ধ্বংসের মুখে পতিত হওয়া। আবার ওদিকে ভেরোনা মারা যাচ্ছে ওকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে কিন্তু চাবিটা দিলে ওকে ড্রাগন কোর্ট বাঁচিয়ে রাখবে না কিন্তু র‍্যাচেলকে ওরা নিয়ে যাবে ঠিকই। কমান্ডার গ্রেসন পিয়ার্স এখন কি করবে....? কে কমান্ডার গ্রেসন পিয়ার্সকে সাহায্য করবে যেখানে মেরান্ডি আর জেনারেল র‍্যান্ডির মতো লোকও ড্রাগন কোর্টের সাথে হাত মিলিয়েছে। হয়তোবা সিগমাতেও এমন কোন লিক আছে। গ্রে ভেবে কোন কুলকিনারা পায় না। কি করবে এখন গ্রে....? র‍্যাচেলই বা কি করবে...? ওদের দুজনার কি মিল হবে নাকি রাউল র‍্যাচেলকে তুলে নিয়ে যাবে...? শিচান কি আসলেই রাউলের নিজের লোক যে কিনা এতক্ষন গ্রে কে ধোকা দিয়ে যাচ্ছে নাকি অন্য কেউ ওকে নিয়োগ দিয়েছ..? মনসিগনর ভেরোনা কি বেচে যাবে...? হাজার বছরের হারানো ঐতিহ্য আর ঐতিহাসিক এই পাউডার কি তবে ড্রাগন কোর্টের হাতেই যাবে...? বাকিটা জানতে হলে অবশ্যই আপনাকে পড়তে হবে জেমস রোলিন্সের সিগমা সিরিজের দ্বিতীয় পর্বের বই 'ম্যাপ অফ বোনস'। লেখক প্রসঙ্গে কিছু বলার নেই তেমন কারন জেমস রোলিন্স মানেই থৃলার, অ্যাডভেঞ্চার আর অ্যাকশনের রোলার কোস্টার রাইড। পেশাতে পশু ডাক্তার হলেও প্রচুর রিসার্চ আর পড়ালেখার ফল এই ম্যাপ অফ বোনস। আর, তাছাড়া রিসার্চ ইউনিটে রোলিন্সের কিছু পরিচিত লোক থাকাতে উনার ব্যাখ্যাগুলো এতটা সুন্দরভাবে উপস্থাপিত হয়। এবার আসি অনুবাদকের কথায়। ভাই আপনি খুব কষ্ট করেই কাজটা করেছেন তাই আপনার কাজের প্রতি সম্মান রেখেই বলছি আরো একটু ভালো করার চেষ্টা করুন দয়া করে। পুরা অনুবাদটা তৈরী করে দরকার হলে দুইদিন রেস্ট নিয়ে নিজে পরে দেখুন আশা করি ভুলগুলো ধরতে পারবেন নিজেই। সত্যিকার অর্থে বলতে গেলে 'ম্যাপ অফ বোনস' বইটা অনেক বেশী তথ্যনির্ভর তাই কিছুটা ধীর গতির লেগেছে আমার কাছে তবে আরো বেশী ধীর লেগেছে অনুবাদের কারনে। শব্দচয়ন বাক্যগঠনরীতি এসব ঠিক থাকলে অনুবাদ পড়ে আসলেই মজা পাওয়া যায়। তবুও অনুবাদটা এতোটাও খারাপ হয়নি যে বলবো অখাদ্য বা পড়ার অযোগ্য কেননা তথ্যনির্ভর ব্যাপারগুলা খুব ভালোভাবেই বর্ণনা করেছে তাই বলা যায় ভালোই হয়েছে মোটামুটি ধরনের তবে আরেকটু ভালো করা যেত এই আর কি। বইয়ের সাথেই বন্ধুত্ব গড়ুক। হ্যাপি রিডিং :)
Thriller
1
‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ শুধু একটি আত্মজীবনী নয় বাঙালী জাতির ইতিহাসের একটি অসাধারণ সাহিত্যিক প্রকাশও বটে। এক কথায় একে একটি অসাধারণ জীবনীসাহিত্য বলা চলে। সাধারণ আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থগুলোতে নিজের মহিমা প্রচারের ও নিজ কৃতিত্বকে তুলে ধরার যে সচেতন প্রয়াস লক্ষ্য করা যায় এই গ্রন্থটি তা থেকে সম্পূর্ণ ব্যাতিক্রম ধারায় রচিত। একজন অসাধারণ নিরপেক্ষ প্রকৃত দেশপ্রেমিকের হাতেই এ অনন্য সাহিত্যের নির্মাণ সম্ভব। বইটি প্রকাশিত হয় ২০১২ সালে। যদিও পান্ডুলিপিটি ১৯৬৭ সালে রচিত হয়। এতে ১৯৩৯ থেকে ১৯৫৪-৫৫ সাল পর্যন্ত পূর্ব বাংলার রাজনৈতিক ইতিহাসের অনবদ্য, নিরপেক্ষ তথ্য এবং বিশ্লেশণ পাওয়া যায়। বইটির ভাষারীতি অত্যন্ত সহজ, সুন্দর এবং সাবলীল, অনেকটাই শেখ মুজিবুর রহমানের মুখের ভাষার কাছাকাছি। বইটির শুরু হয়েছে অনেকটা সরল স্বীকারোক্তির মধ্য দিয়ে। উপন্যাসের মত। গ্রামের একটি ছেলে বর্ণনা দিচ্ছে তার বংশের, তারপর আসে শেখ মুজিবুর রহমানের শৈশব-কৈশোরের দুরন্তপনার আখ্যান। পুকুরে দীর্ঘ সময় সাঁতার কাটা, মাঠে ফুটবল নিয়ে পড়ে থাকা বা যে কোন জায়গায় হঠাৎ করেই মারপিট শুরু করে দেয়ার গল্প। তবে এই দুরন্তপনার মধ্যেও বিশেষভাবে লক্ষ্যণীয়, লেখক তাঁর জীবনের শুরুর দিনগুলো থেকেই কখনও কোন অন্যায়ের সাথে আপোষ করেন নি। অন্যায়, অত্যাচার মুখ বুজে সহ্য করা তাঁর স্বভাববিরুদ্ধ ছিল। কাহিনীর ধারাবাহিকতায় এগিয়ে গেছে অসাধারণ চড়াই-উৎরাইয়ে ভরা লেখক তথা বঙ্গবন্ধুর জীবনের গল্প নিয়ে। সেই দৃষ্টিকোণ থেকে একে জীবনী গ্রন্থ হিসেবে আখ্যা দেয়া হয়। কিন্তু বইটি পাঠে এগিয়ে যেতে যেতে পাঠকের কখনো মনে হবে একটি অসাধারণ গল্পের বই, কখনো মনে হবে বাংলার ইতিহাস যেন কোন সাহিত্যিক সাবলীল ভাষায় নিজের মত করে বয়ান করছেন; যার কোথাও কোন পক্ষপাতিত্ব নেই, নেই কিছু লুকোবার প্রয়াস। মাত্র ১২ বছরে বাল্য বিবাহের কাহিনিও বলে গেছে অবলীলায়। তারপর আসে লেখকের কলকাতার কলেজ জীবনের কথা। সেখানে ইসলামিয়া কলেজের ছাত্র থাকাকালীন সময়েই তাঁর রাজনীতির সাথে প্রথম সংযোগ ঘটে। আমরা দেখতে পাই শেখ মুজিবুর রহমান তার বাবার কাছে থেকে টাকাপয়সা এনে বিভিন্ন রাজনৈতিক কাজে ব্যয় করছেন। আবার কখনো লেখকের অর্ধাঙ্গিনী সংসারের খরচ থেকে বাঁচিয়ে টাকা জমিয়ে রাখছেন। পরে তিনি কলকাতা থেকে এলে সে টাকা তাঁর হাতে তুলে দিচ্ছেন। লেখকের কাজের প্রতি পরিবারের সমর্থন সবসময়ই এমন অকুণ্ঠ ছিল। ১৯৩৬ সালে বঙ্গবন্ধু প্রথম রাজনীতিতে পা রেখেছিল সুভাষ বসুর ভক্ত হয়ে। তবে সক্রিয় রাজনীতিতে তাঁর প্রবেশ শহীদ সোহরাওয়ার্দীর হাত ধরে। তাঁকেই লেখক সব সময় আদর্শের স্থানে রেখেছিলেন। বইটি পড়তে পড়তে মনে হবে ঠিক যেন অর্ধশত বছর আগের কোন পরিস্থিতির ভেতর দিয়ে যাত্রা করছি আমরা। ঘটনাপুঞ্জ এমনি নিরেট যে এর কোথাও কোন ফাঁক নেই, দম ফেলার অবসর নেই। বইটির পরতে পরতে চমক আর সরলতা, বন্ধুত্ব আর সততা, ত্যাগ আর সংগ্রামের নজির। সাথে রয়েছে বিদেশ ভ্রমণের চাঞ্চল্যকর বর্ণণা। এতে পাঠক ভ্রমনকাহিনীর স্বাদও পাওয়া যায় এই বইতে। একজন সুদক্ষ ঔপন্যাসিকের মতো বঙ্গবন্ধু নিজের মতকে মিলিয়েছেন লেখার সাথে। যা বইটিকে দিয়েছে ভিন্ন মাত্রা। বঙ্গবন্ধু কেন জাতির জাতির স্থপতি তা বইটি পাঠের মাধ্যমে জানা যাবে। উপলদ্ধি করা যাবে বঙ্গবন্ধুর বিশালত্বকে। বঙ্গবন্ধুর জীবন-সংগ্রাম শুধুই একজন রাজনীতিবিদের জীবন-সংগ্রাম নয়, এর সঙ্গে জড়িয়ে আছে একটি জাতির ঐতিহাসিক নানা পর্যায়ের ইতিহাস। তাই বঙ্গবন্ধুর জীবনীগ্রন্থ প্রকাশ একটি ঐতিহাসিক ঘটনা, অসামান্য দলিল। একজন রাজনীতিবিদের জীবন-চরিত যেমন ফুটে উঠেছে, তেমনি বঙ্গবন্ধুর জীবনধর্মী লেখার মাধ্যমে গ্রন্থটিতে রাজনীতি ছাপিয়ে বড় হয়ে উঠেছে গণমানুষের কথাই। অসামান্য হৃদয়বত্তার বহির্প্রকাশ ঘটেছে এই বইয়ে। শুধু রাজনৈতিক ঘটনাপ্রবাহ বা বিখ্যাত ব্যক্তিবর্গ নয়, সাধারণ মানুষের কথাও সমগুরুত্বে এ বইয়ে স্থান পেয়েছে। রাজনীতি ছাপিয়ে গণ-মানুষের কথাই বাক্সময় হয়েছে যেমন তাঁর জীবনে, তেমনি এই অসামান্য আত্মকথায়। বাংলাদেশে আর্দশ ছাত্র রাজনীতির প্রতিষ্ঠাতা করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মজিবর রহমান। তাই আদর্শ ছাত্ররাজনীতি করতে হলেও শিক্ষার্থীদের বইটি পাঠ আবশ্যক। এটি শুধু অসমাপ্ত আত্মজীবনী নয়, অসমাপ্ত জীবনের কথামালাও বটে। শেখ মুজিবের সংগ্রামী জীবন ও কর্মের একটি ছাপচিত্র এই আত্মজীবনী। অকপট আত্মসমালোচনা এই আত্মজীবনীর প্রামাণ্যতা বৃদ্ধি করেছে। মানুষের প্রতি নিরঙ্কুশ ভালবাসার প্রমাণ এই বইয়ের সর্বত্র ব্যাপ্ত। নিজের সবলতা-দুর্বলতা উভয়ই বঙ্গবন্ধু এই বইয়ে তুলে ধরেছেন। আজন্ম সংগ্রামী মানুষটির অবয়ব এ বইটি পাঠের মধ্য দিয়ে স্পষ্ট হবে। রাষ্ট্র-দল ও রাজনীতির উর্ধে মানুষ শেখ মুজিব এই আত্মজীবনীতে বড় হয়ে দেখা দিয়েছে। বাংলাদেশের জন্মের ইতিহাস বঙ্গবন্ধুর এ আত্মজীবনীতে বিধৃত আছে। অত্যন্ত বিশ্বস্তভাবে লিপিবদ্ধ আছে বাংলার সমাজ-রাজনীতির ইতিহাসের গতিপ্রকৃতি এতে। অকপটে আত্মসমালোচনা এ আত্মজীবনীর প্রামাণ্যতা বৃদ্ধি করেছে। বইটিতে আছে অকপট সত্য। বঙ্গবন্ধু আত্মজীবনীতে নিজের দোষ-ত্রুটির কথা অকপটে উল্লেখ করেছেন। তিনি এ বইয়ে বেশ কয়েকবার বলেছেন, তিনি একরোখা ছিলেন এবং এ জন্য তিনি কৈশোর ও যৌবনে দলবল নিয়ে মারামারি ও লাঠালাঠি করেছেন। মানুষের প্রতি বঙ্গবন্ধুর নিরঙ্কুশ ভালোবাসার প্রমাণ এই বইয়ের সর্বত্র ব্যাপ্ত। একজন আদর্শ দেশনায়ক, আদর্শ দেশপ্রেমীকের চিহ্ন বহন করে চলেছে বইটি। আমাদের তরুণ সমাজ ও ভবিষ্যৎ কাণ্ডারীদের জন্য এটি কেবল একটি অনুসরণীয় আদর্শই নয় ইতিহাসের প্রতীকও। এটি নিরপেক্ষতার মৌলিক দলিলও বটে। জীবন মানেই সাহিত্য। তবে সব রচনা সাহিত্যের মানদণ্ডে পৌঁছাতে সক্ষম হয় না। অসাধারণ আত্মজীবনীও উন্নত সাহিত্যের মর্যাদা পেতে পারে যদি তা হয় সহজ অথচ মর্মস্পর্শি, সাধারণ হয়েও অসাধারণ। যদি তা হয় বঙ্গবন্ধু শেখমুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’র অনুরূপ। ১৯৫৫ পর্যন্ত তিনি লিখতে পেরেছিলেন এক অসাধারণ ইতিহাস এরপর আরো অনেক চড়াই উৎরাই তিনি পার করছেন কিন্তু সময়ের অভাবে তা লিপিবদ্ধ করার সুযোগ তাঁর ঘটেনি, ফলে তাঁর ও এদেশের জাতীর জীবনের অমূল্য ইতিহাস অসম্পূর্ণই রয়ে গেছে। এক্ষেত্রে ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ই একটি উপযুক্ত শিরোনাম। হাসান মাহামুদ নিজস্ব প্রতিবেদক, রাইজিংবিডি ডটকম
Political
3
লুইসা মে এলকট এর একটাই মাত্র বই পড়েছি আমি আর সেটা হল এই লিটল ওমেন। তবে না বলে পারছি না, সেবা প্রকাশনী থেকে যে বইটা বার করা হয়েছিল, সেটার নামকরণটা হয়েছিল অনেক বেশি মানানসই। অনুবাদিকা সালেহা চৌধুরী যেভাবে আক্ষরিকভাবে নাম অনুবাদ করেছেন, বইটার আবেদনই নষ্ট হবার জন্য এনাফ!! মনে হয়েছে যেন ছোট আকারের কোন পুতুল সদৃশ্য কোন ম্যাজিকাল মেয়ের কথা বলছেন তিনি!! অথচ বইটা অসম্ভব রকম সাধারনভাবে একটা সাধারন পরিবারের কথা বলেছে। যে পরিবারের বাবা যুদ্ধে গিয়েছে, মা একাই এক হাতে চার মেয়েকে নিয়ে সংসার চালিয়ে যাচ্ছেন! মেগ, জো, বেথ এবং এ্যামি চার বোন কিভাবে বড় হচ্ছে বাবা ছাড়া, কিভাবে তারা যুদ্ধকালীন সময়ে প্রতিদিনের বাধা বিপত্তি কাটিয়ে উঠছে রোজ রোজ, এরই গল্প এটা। এই বই এর মুল চরিত্র জো, বাড়ির মেজ মেয়ে হলেও নিজেকে সে বাড়ির ছেলেই মনে করে। বাড়ির রক্ষাক‌‌‌‌‌‌‌‌‌র্তার দায়িত্ব এবং অন্য বোনদের সুরক্ষা এবং সাপো‌‌‌‌‌‌‌‌‌র্ট দেবার বিষয়টি নিজেই নিয়েছে নিজের ঘাড়ে। সে আবার সুপ্ত লেখিকা!! লুকিয়ে লুকিয়ে গল্পও লিখে সে!! আসলে এই গল্পটা লেখিকা লুইসা মে এলকট এর নিজের জীবন থেকেই নেয়া। জো এর চরিত্রটা আসলে তারই আদলে তৈরি করেছেন তিনি। এভাবেই চলে যেত থাকে মা‌‌‌‌‌‌‌‌‌র্চ পরিবারের দিনগুলো। একই সাথে এসেছে প্রেম, ভালবাসার সংঘাতময় সময়গুলো। অভাবের সংসারে মানিয়ে চলা, নিজের সবচেয়ে দামী জিনিস উতস‌‌‌‌‌‌‌‌‌র্গ করে প্রিয়জনের জন্য কিছু করা, পরিবারের জন্য দিনের পর দিন কষ্ট সহ্য করে যাওয়া, অভাবের কারনে আত্বীয়দের কটুক্তি, আদুরে বড়লোক বন্ধু এবং কাজিনদের সাথে মানিয়ে চলার বিরক্তিকর এবং কষ্টকর চেষ্টা এবং শেষে সুখী হওয়া... আর কি চাওয়া থাকতে পারে মানুষের জীবনে? তবে অনুবাদিকা বইটার মুল ঝরঝরে বিষয়টিকে ফুটিয়ে তুলতে সেভাবে পারেন নি। পড়তে গিয়ে জায়গায় জায়গায় হোচট খেতে হয়েছে। আশা করি তিনি পরব‌‌‌‌‌‌‌‌‌র্তী বই নিয়ে কাজ করার সময় বিষয়টা খেয়াল রাখবেন।
Childrens-Book
2
মুজিব খুন হয়ে যাওয়ার পর একটা প্রশ্ন প্রায়ই ওঠে, একটা চক্রান্ত যে চলছে এ কথা জানা সত্ত্বেও ভারত সরকার মুজিবকে বাঁচানোর জন্য কিছু করল না কেন? '৭৭-এর ৩০ নভেম্বর ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী ইন্দিরা গান্ধীর সঙ্গে সাক্ষাৎকালে আমিও এ প্রশ্নটা তুলি তার কাছে। শ্রীমতী গান্ধী আমাকে বলেন, কিছু একটা যে ঘটতে যাচ্ছে আমরাও তা জানতাম। মুজিবকে আমি এ সম্পর্কে বহুবার সতর্কও করে দিই। কিন্তু তিনি বরাবর আমাকে বুঝিয়েছেন, 'পাকিস্তানের জেল থেকেই যখন বেরিয়ে আসতে পেরেছি, নিজের দেশের জল্লাদদের নিশ্চয়ই এড়াতে পারব।' এর বেশি কিছু বলতে চাইলেন না শ্রীমতী গান্ধী। একবার কেবল মন্তব্য করলেন, 'আমাদের গোয়েন্দা বিভাগও খুব সতর্ক ছিল না।' মুজিব খুন হয়ে যাওয়ার কিছু দিন পর কলকাতায় রুস্তমজির সঙ্গে আমার দেখা হলো। তাকে বললাম, দেখলেন তো তাজউদ্দীনের খবর কত সঠিক ছিল। এরপর তার সঙ্গে আমার ফের দেখা হয় দিলি্লতে মাসতিনেক পর। এই সময়ের মধ্যে আওয়ামী লীগের চার নেতা জেলখানায় খুন হন। রুস্তমজিকে এবার বলতে হলো, হ্যাঁ, তাজউদ্দীনের খবরে ভুল ছিল না। ওই ষড়যন্ত্রে জিয়া আর মোশতাকই ছিলেন নাটের গুরু.......।
War
5
যারা ভোর এনেছিল লেখক- আনিসুল হক প্রকাশক- প্রথমা প্রকাশন প্রচ্ছদ ও অলংকরণ- সব্যসাচী হাজরা পৃষ্ঠা সংখ্যা- ৩০৪ মূল্য- ৫০০ টাকা প্রকাশকাল- ফেব্রুয়ারি ২০১২ ‘এক ছিল ব্যাঙ্গমা । আরেক ছিল ব্যাঙ্গমি। একটা আমগাছের ডালে ছিল তাদের বাস।’ রূপ কথার গল্পের এই ত্রিকালদর্শী বিহঙ্গদ্বয় দিয়ে উপন্যাসের শুরু হলেও ঠিক পরক্ষণেই লেখক আর সেই রূপ কথায় রইলেন না। সরাসরি চলে আসেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ও পূর্ব পাকিস্তান । কাল নিয়ে আসেন ১৯৫২ এর পূর্ব পর্যন্ত আর উপন্যাসের মূল চরিত্রে বঙ্গবন্ধু, তাজউদ্দিন, তিন নেতা সহ অসংখ্য সংগ্রামী নেতাদের নিয়ে আসেন ঘটনাক্রমে। যেসব ঘটনা সত্য ও সামান্য কল্পনার মিশেল এবং বাংলাদেশের গৌরবময় ইতিহাস। বাংলা সাহিত্যে ইতিহাস আশ্রয়ী উপন্যাস নেহায়েত কম নয়। এই লেখকের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস নির্ভর উপন্যাস ‘মা’ বাংলা সাহিত্যে এক মূল্যবান সংযোজন। লেখক হয়তো ‘মা’ লিখে এই ধারার লেখায় প্রাণিত হয়েছেন এবং বাংলাদেশের ইতিহাসের মহানায়কদের জীবনাশ্রয়ী উপন্যাসের প্রথম খন্ড ‘ যারা ভোর এনেছিল’ লিখেছেন। ‘মা’ উপন্যাসের মত এবারো লেখক উপন্যাসের পাত্র-পাত্রীর নাম প্রকৃত নামে লিখেছেন। ফলে মোটামুটি ইতিহাস জানা পাঠকের পাত্র-পাত্রির চরিত্র ও ঘটনার পরিণতির বিষয়ে পূর্ব ধারণা থাকায় উপন্যাসটি যেমন সহজ বোধ্য হয়েছে আবার ইতিহাস না জানা পাঠকের মনে এ উপন্যাসে বাস্তব চরিত্রগুলো ভিন্ন মানবিক ছাপ ফেলতে পারবে। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জন্ম থেকে শুরু করে তাঁকে অনুসরণ করে লেখক ঘটনার স্থান-কালে পাঠককে নিয়ে গিয়েছেন । পাশাপাশি তিনি আর এক কিংবদন্তি তাজউদ্দিন আহমেদকে সাথে নিয়ে অগ্রসর হয়েছেন। এই দুই ধারার মধ্য দিয়ে ছাত্র রাজনীতির ধারা-ভাবনা-ধরণ-প্রকরণ বর্ণনা করেছেন। উপ-মহাদের প্রধান রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও তাঁদের আন্দোলনের গতিবিধি,তত্ত্ব, উদ্দেশ্য, কর্মসূচি একনকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল থেকে হাতাহাতির ঘটনা পর্যন্ত লেখক অতি যত্নে, অল্প কথায়, সুনিপুন সমসাময়িক ভাষাপ্রবাহে ফুটিয়ে তুলেছেন। গুরুগম্ভীর ঘটনার ঘনঘটায় পাঠক যখন প্রায় ক্লান্ত ঠিক তখনি লেখক ঐ বিহঙ্গদ্বয়ের স্মরণাপন্ন হয়েছেন। তাদেরকে দিয়ে তখনি কথা বলিয়েছেন বাংলা সাহিত্যের পুরোনো ঐতিহ্য পুঁথির ছন্দে। বর্তমান সাধারণ ঘটনাকে গুরুত্বপূর্ণ হিসেবে পাঠককে সজাগ করতে ভবিষ্যতের ঘটনার আভাস দিয়েছেন। এটা বাংলা সাহিত্যে একটি নতুন সংযোজন। মহাননেতা বা ইতিহাসের মহানায়কেরা একদিনে এমন বড় নেতা হয়ে ওঠেনি । তারাও মাঠে ঘাটে মিছিলে মিটিংএ পিকেটিংএ অংশ নিয়েছেন।সাইকেল চালিয়েছেন। তাঁরাও সিনিয়র লিডারদের নির্দেশ-আদেশ-উপদেশ অনুসরণ করেছেন আবার একমত হতে না পারলে নেতাদের উপর চাপ সৃষ্টি করেছেন ।আবার ক্রমান্বয়ে স্বতন্ত্র ভাবনা-চেতনা-উদ্দেশ্য নিজেদেরকে প্রস্তুত করেছেন। ফলে তারাও হয়ে উঠছিলেন আপামর জনসাধারণের প্রণের নেতা । নেতা হয়ে ওঠার এই যে ভাঙ্গা-গড়ার ইতিহাস, বিশুদ্ধ নেতা হয়ে ওঠার ইতিহাস ‘যারা ভোর এনেছিল’ গ্রন্থে পাওয়া যাবে। এই গন্থ নতুন প্রজন্মের জন্য একারণেই অবশ্যপাঠ্য । এই অর্থে গ্রন্থটি নেতৃত্ব বিকাশের প্রশিক্ষণ ম্যানুয়াল বললে অতিরঞ্জিত বলা হবে না। শিশু মুজিবের রাজনৈতিক মানষ গঠনে গৃহশিক্ষক আবদুল হামিদের কথা এসেছে ঘুরেফিরে।লেখক তাঁর কলকাতায় ছাত্র রাজনীতিতে জড়িয়ে পরা এবং সোহরাওয়ার্দীর শিষ্যত্ব গ্রহণের মধ্যদিয়ে ঐতিহাসিক ঘটনাপ্রবাহের মূলধারায় প্রবেশ করেছেন ।এরপরে ব্রিটিশরা পাকিস্তান ও ভারতকে স্বাধীন করে দিচ্ছে।দ্বিজাতি তত্ত্বের ভিত্তিতে নাকি অখন্ড বাংলা- তা নিয়ে বিতর্ক, রাষ্ট্রভাষা বাংলা প্রতিষ্ঠার আন্দোলনে তরুণতর তাজউদ্দীন আহমদের অংশগ্রহণ। মওলানা ভাসানী, সোহরাওয়ার্দীর ঢাকা আগমণ। জনপ্রিয় তরুণ মুজিবের বারবার গ্রেপ্তার ও কারাবরণ অত:পর মুক্তি, ইত্যাদি ঘটনার প্রাঞ্জল উপস্থাপনায় এগিয়ে চলে উপন্যাস। ওদিকে টুঙ্গিপাড়ায় রেনুর প্রথম সন্তানের মৃত্যু পরবর্তী দুই সন্তানকে নিয়ে জীবন যাপন ও মুজিবের শূন্যতার হাহাকারকে ছাঁপিয়ে উজ্জ্বল হয়ে ওঠে তাঁর স্বামীকে দেশের জন্ উৎসর্গ করে দেয়ার দৃষ্টান্ত । এমনই প্রেক্ষাপটে আসে একুশে ফেব্রুয়ারি ১৯৫২র ভাষা আন্দোলন। আর ট্রিলজির এই প্রথম খণ্ডে ভাষা আন্দোলনের বর্ণনা পূর্ণাঙ্গরূপ লাভ করেছে। ‘যাঁরা ইতিহাস নির্মাণ করেছেন, তাঁরাই এই উপন্যাসের চরিত্র।‘ ‘আনিসুল হক গভীর মমতায় তাঁদেরকে আমাদের হৃদয়ের কাছাকাছি নিয়ে এসেছেন।’ বাংলাদেশের স্বাধীনতা যে এক দিনে বা এক বছরে বা শুধু যুদ্ধের মাধ্যমে আসে নি তা এই গ্রন্থ পাঠে বারবার মনে হয়েছে। এই বইয়ে ১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত বর্ণিত হয়েছে। অনশনের কারণে মুজিবের কারামুক্তিতে শেষ হয়েছে এই প্রথম খন্ড। বাংলাদেশের ইতিহাসের মূল স্তম্ভ ১৯৬২, ৬৬, এর জন্য লেখক ইতোমধ্যে ‘উষার দুয়ারে’ লিখেছেন। আমরা আশা করি দেখতে পাবো ৬৯, ৭০ ও অনন্য ৭১ এবং ১৯৭৫ সালের বেদনাদায়ক ঘটনার মধ্যদিয়ে এই ট্রিজলি উপন্যাসের সফল সমাপ্তি। নিঃসন্দেহে বলা যায় ‘যারা ভোর এনেছিল’ ইতিহাসে আগ্রহীদের কাছে বাংলাদেশের ইতিহাসকে স্বচ্ছ করে তুলবে, আর সাহিত্যানুরাগীদের ইতিহাস জানতে সহায়তা করবে।
War
5
মাহবুদুর রহমান স্যারের এই বইটাতে বাংলাদেশ সমন্ধে অনক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উপস্হাপন করেছেন। এই বইটা পড়ে প্রাচীন কাল হতে ১৯৭১ সাল পর্যন্ত অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যায়। আমাদের সকলেরই উচিত বাংলাদেশর ইতিহাস সমন্ধে জ্ঞান অর্জন করা। তাই এই বইটা পড়লে অেক উপকার হবে।
Political
3
খ্রীস্টপূর্ব ১৮০ ১৮০ খ্রীস্টপূর্বাব্দে মৌর্য সাম্রাজ্যের পতনের পর ভারতবর্ষে শুঙ্গ সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠা হয়। তখন পুষ্যমিত্র শুঙ্গ নির্দেশ দেন সব বৌদ্ধ ধর্মাম্বলীদের হত্যা করতে। একেকটা কর্তিত বৌদ্ধ মস্তকের বিনিময়ে একশত স্বর্ণমুদ্রা ঘোষণা করেন। এটা ছিল সম্রাট অশোকের ধ্বংসযজ্ঞের চেয়েও ঘৃণিত কাজ। তৎকালীন বৌদ্ধ ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলেন তিব্বতের শান্তির মঠের প্রধান ডুকপা লামা। প্রতি দুই বছর অন্তর তিনি ভ্রমণে বেরুতেন। শুঙ্গ রাজা যখন বৌদ্ধদের হত্যা করার নির্দেশ দেন তখন ডুকপা লামা তার দ্বি-বার্ষীক ভ্রমণের আয়োজন করছিলেন। এদিকে ভারতের কন্নোর অংশে থারু ও শাক্য জাতির মধ্যে যুদ্ধ লেগেই থাকতো। শাক্যদের মধ্যে একটা জাত আবার আলাদা হয়ে গেছিল বুদ্ধের সময়েই, তারা বৌদ্ধ ধর্ম গ্রহণ করেনি। তারা আবার শাক্যদের দেখতে পারতো না। তাদের বলা হত লিচ্ছবী। এই লিচ্ছবীরা শুঙ্গ রাজার সাথে চুক্তি করে তারা ডুকপা লামাকে তাদের হাতে তুলে দিবে, তার বিনিময়ে শাক্যদের হারিয়ে কন্নোর অংশ লিচ্ছবীদের দিয়ে দিতে হবে। মানলাম ডুকপা লামা বৌদ্ধ ধর্মের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি, কিন্তু তার জন্য একটা রাজ্য ছেড়ে দিতে চাইবে শুঙ্গ রাজা? অবশ্যই না। কিন্তু তারপরেও শুঙ্গ রাজা রাজি হয়েছিল। কারণ লিচ্ছবীরা আরো একটা জিনিস দিতে চেয়েছিল শুঙ্গ রাজাকে। সেটা হলো বুদ্ধের অন্ধকার অবতার কিংবা ব্ল্যাক বুদ্ধা! বুদ্ধের অন্ধকার অবতার কী জিনিস সেটা ব্যাখ্যা করতে বিশদ আলোচনার প্রয়োজন। আমি অল্প কথায় বলার চেষ্টা করছি। বুদ্ধের জীবদ্দশায় পৃথিবীতে একটা উল্কাপাত হয়। সেই উল্কাপিন্ডে এমন এক ধাতু পাওয়া যায় যা পৃথিবীর চেনা কোনো ধাতুর সাথে মেলে না। কালো রঙের সেই ধাতু খুবই পাতলা এবং শক্ত। এই ধাতু দিয়ে অস্ত্র বানালে সেটা বহন করাও যেমন সহজ হবে তেমনি ব্যবহারকারী প্রতিপক্ষের থেকে অনেক এগিয়েও থাকবেন। সেই ধাতুকে তখন হিম্বা নামে ডাকা হতো। ধারণা করা হয় বর্তমাণ বেদে জাতির পুর্বপুরুষ উরগ জাতি সেই ধাতুর অনেকটুকু নিয়ে যায়। সেই ধাতু দিয়েই তারা একটা বুদ্ধ মূর্তী বানায়। এবং কালো জাদু করে তারা সেই মূর্তীর মধ্যে স্বয়ং বুদ্ধকে নিয়ে আসতে পারবে। কিন্তু সেখানে বুদ্ধের অন্ধকার দিকটা আসবে। সারাজীবন উনি উনার জ্ঞানের আলো দিয়ে মানুষকে আলোকিত করেছেন। কিন্তু তার অন্ধকার অবতার তার ওল্টোটা করবে। পুরোটাও কালো জাদু! শান্তির মঠের ভারপ্রাপ্ত লামা নোরবু ডেকে পাঠায় শামান এবং বিধুকে। ডুকপা লামাকে যেভাবেই হোক উদ্ধার করে আনতে হবে। শামান টাকার বিনিময়ে যুদ্ধ করে, বর্তমান সময়ের ফ্রিল্যান্সার মার্সেনারির মত। আর বিধু আসাম ও সিংহল রাজার সেনাবাহিনীতে কাজ করতো। তাদের দুজনের একজনও এই কাজটার জন্য একটা পয়সাও নিচ্ছে না। দুজনেই কাজটা করছে দায়িত্ব ও ভালোবাসা থেকে। এতিম শামানকে রাস্তায় কুড়িয়ে পেয়েছিলেন ডুকপা লামা। তারপর থেকে নিজের কাছে রেখে ওকে মানুষ করেন। শিক্ষা দিক্ষা দেন। শামানের পরবর্তীতে মঠের একজন শ্রমন হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু এই জীবন ওর ভালো লাগে না বলে এখান থেকে এক সমইয় পালিয়ে যায়। দিকে দিকে লালচুলো তিব্বতী যোদ্ধার সুনাম ছড়িয়ে পড়ে। অল্প সময়েই নিজের বিশাল একটা বাহিনী গড়ে তোলে লালচুলো শামান। শামানের জাত নিয়েও একটা রহস্য আছে যেটা সে নিজেও জানে না। এই এলাকার কারো সাথেই ওর চোখের রঙ, চুলের রঙ এবং দৈহিক আকার মেলে না। নোরবুর কাছে শুনেছে ওকে যখন পাওয়া গেছিল তখন ওর গলায় একটা মাদুলি ছিল। সেই মাদুলির ভেতরে বিজাতীয় ভাষায় কিছু একটা লেখা ছিল। সুতরাং ডুকপা লামাকে উদ্ধার করতে যাওয়ার এটাও একটা কারণ হতে পারে। সেই মাদুলি কোথাও আছে সেটা তিনি ছাড়া আর কেউ জানে না। বর্তমান সময় আসাম থেকে তামাবিল বর্ডার দিয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করার পর থেকে আর কোনো খবর নেই শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. মিতায়ন ও তার দলের। দুই বছর ধরেই তারা একটা এক্সপেডিশন চালাচ্ছিল। তাদের দাবী ছিল তারা যদি সফল হয় তবে উপমহাদেশের ধর্মীয় অনেক ব্যাপার স্যাপার নতুন করে চিন্তা করতে হবে। বসের ডাকে ট্রেনিং শেষ না করেই দেশে ফিরে আসে তানভীর। যদিও ওর রেজাল্ট নিয়ে যথেষ্ট সন্তুষ্ট ছিল সবাই। দেশে আসার সাথেই সাথেই ওকে দায়িত্ব দেয়া হয় ড. মিতায়নকে খুঁজে বের করার জন্য। ফিল্ডে এটাই ওর প্রথম এসাইনমেন্ট। ওকে সাহায্য করার জন্য সাথে দেয়া হয় শুটার সুলতান ও ওসি জালালকে। এছাড়া আইটি সাপোর্ট থেকে শুরু করে সবরকম লজিস্টিক সাপোর্টের জন্য আছে টমি তো আছেই। তদন্ত করতে ওকে আসতে হয় সিলেট। দশবছর আগে বড় একটা ধাক্কা খেয়ে সিলেট ছেড়েছিল ও, জীবনে আর কখনোই সিলেট আসার ইচ্ছে ছিল না। অথচ ভাগ্যের ফেরে পড়ে জীবনের প্রথম এসাইনমেন্টেই আসতে হলো সিলেট। সিলেটে এসে তদন্ত শুরু করতে চাঞ্চল্যকর সব তথ্য বেরিয়ে আসতে শুরু করল। সবকিছুর সাথেই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে ব্ল্যাক বুদ্ধা! বইটা প্রথম থেকেই প্রধাণত দুইটা টাইমলাইনে এগিয়েছে। এছাড়াও মাঝে মধ্যে ছোট ছোট টাইমলাইনে কয়েকবার যেতে হয়েছে। সপ্তরিপুর ক্ষেত্রেও আমরা এরকম দেখেছি। শেষের দিকে গিয়ে দুইটা টাইমলাইন সুন্দরভাবে এক হয়ে মিশে গেছে। আলোচনার একদম প্রথমেই বলতে চাই বইটা আমার ভালো লাগেনি। কেন ভালো লাগেনি সেটাই আলোচ্য বিষয়। আমরা যারা লেখকের সপ্তরিপু পড়েছি এবং আমাদের যাদের কাছে সপ্তরিপু অনেক ভালো লেগেছিল তাদের কাছে লেখকের প্রতি এক্সপেকটেশনটাও ছিল সেই রকম। সপ্তরিপুর মত একটা বইয়ের পরে ব্ল্যাক বুদ্ধার মত এরকম দুর্বল প্লট মানা যায় না। বইটার কাহিনী প্রথম থেকেই একদম স্লো, কোনো গতি নেই, সাসপেন্স নেই, তেমন কোনো টুইস্টও নেই। একটা ভালো থ্রিলার বইয়ের প্রধান উপকরণই হলো এর প্লট টুইস্ট এবং সাসপেন্স। ব্ল্যাক বুদ্ধা বইয়ে এই ব্যাপারগুলোর অভাব বোধ করেছি। ইতিহাস বলে, মৌর্য সাম্রাজ্যের পতন ঘটেছিল ১৮৫ খ্রীস্টপূর্বাব্দে, কিন্তু বইয়ে দেখানো হয়েছে ১৮০ খীস্টপূর্বাব্দে। যদিও এটা সম্পূর্ণ ফিকশন, তারপরেও ইতিহাসকে আশ্রিত করে যখন লেখা হয়েছে সেখানে এই ভুলগুলো মারাত্মক। পুরো গল্পটা বলতে লেখক ৪৮০ পৃষ্ঠার মত ব্যবহার করেছেন, যেখানে আমার কাছে মনে হচ্ছিল এই গল্পটা ২০০ পৃষ্ঠাতে বললে পড়তে আরাম হত, গতি পাওয়া যেত। বানান ভুলের পরিমাণ কম ছিল, কিন্তু কিছু শব্দের আঞ্চলিক ব্যবহার একদমই ভালো লাগেনি। যেখানে প্রমিত বাংলায় বিবরণ দেয়া হচ্ছে সেখান হাই তোলাকে হাইম ছাড়া বলতে দেখলে খটকা লাগে। এর আগে সপ্তরিপু পড়েছিলাম দুই দিনে, কিন্তু ব্ল্যাক বুদ্ধা শেষ করতে আমার সময় লেগেছে পনেরো দিন। সত্যি বলতে প্রচন্ড হতাশ হয়েছি আমি। বইয়ের নাম ব্ল্যাক বুদ্ধা, গল্পেও বলা হয়েছে ব্ল্যাক বুদ্ধা বানানো হয়েছে কালো রঙের ধাতু দিয়ে। কিন্তু বইয়ের প্রচ্ছদের বুদ্ধাটা ধূসর রঙের। বইয়ের বাইন্ডিং নিয়ে নতুন করে আমার কিছু বলার নেই। সপ্তরিপু আমি পড়ার পর আমার বোন পড়েছিল, তাতেই মলাট ছিড়ে যাওয়ার অবস্থা। ব্ল্যাকবুদ্ধাও তথৈবচ।
Thriller
1
ছয়শত মিলিয়ন আলোকবর্ষ দূরে কেপলার টুটুবি গ্রহে নতুন সভ্যতা গড়ে তুলবে তারা । কিন্তু ওদের সাথে ছদ্ম-পরিচয়ে উঠে পড়েছে দুটি রবোমানবও। পারল কি তারা কেপলার টুটুবি গ্রহে পৌছাতে ? আর পৃথিবীর ভাগ্যে কি হল ? জানতে হলে পড়তে হবে মুহাম্মদ জাফর ইকবালের মাস্টারপিস বিজ্ঞান কল্পকাহিনি 'কেপলার টুটুবি'।
Science-Fiction
4
my book
Political
3
মানুষের সভ্যতার ইতিহাসের প্রায় পুরো অংশটাই যুদ্ধ,সংঘাত এবং হানাহানিতে পূর্ণ। বুদ্ধিমান প্রজাতি হিসেবে এমন আচরণ মানুষকে মানায় কিনা তা নিয়ে দার্শনিকদের মধ্যে বিতর্ক আছে প্রচুর। ‘সারভাইভাল অব দ্য ফিটেস্ট’- তত্ত্বকে সঠিক প্রমাণ করতেই যেন মনুষ্য প্রজাতি ব্যতিব্যস্ত। হয়ত বুদ্ধিমান প্রাণীর অস্তিত্বের গভীরেই আছে আত্ম-ধ্বংসী প্রবণতা। আমরা কেন আজও পৃথিবীতে অন্য গ্রহের বুদ্ধিমান প্রাণীর দেখা পাইনি- তা নিয়ে বিজ্ঞানী এনরিকো ফার্মির কিছু মন্তব্য “ফার্মির বিভ্রান্তি’’ নামে বিখ্যাত হয়ে আছে। এ বিভ্রান্তির সমাধান হিসেবে অনেক বিজ্ঞানী বুদ্ধিমান প্রাণীর আত্ম-ধ্বংসী প্রবণতাকেই মেনে নিয়েছেন। মুহম্মদ জাফর ইকবালের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ‘পৃ’ পড়তে পড়তে এসব কথাই মাথায় ঘুরছিল। “পৃ” উপন্যাসের প্লট একটি মহাকাশযানকে ঘিরে-যা কোনো এক সুদূর গ্রহ থেকে মহাকাশ পাড়ি দিয়ে ভ্রমণ করছে বহুদিন আগে মানুষের ছেড়ে আসা আদি-গ্রহ পৃথিবীর উদ্দেশে, পৃথিবীতে বাস করার উদ্দেশ্যে। কিন্তু সঠিক সময় আসার আগেই মহাকাশযানের মানুষকে জাগিয়ে তোলা শুরু হয়। কারণ হিসেবে সবাইকে বলা হয় যে, পৃথিবীতে মানুষ একে-অপরের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করছে যা তারা যে উন্নত সমাজ থেকে এসেছে তা থেকে পুরোপুরি ভিন্ন। তাই মহাকাশযানের মানুষকে এমন সমাজে যোগ্য করে গড়ে তোলার জন্য জাগিয়ে তোলা হয়েছে এবং মহাকাশযানের নিয়ন্ত্রণ সরিয়ে নেয়া হয়েছে যাতে মানুষ নিজেরা বোঝাপড়ার মাধ্যমে নেতৃত্ব বেছে নেয় এবং মহাকাশযানকে কক্ষপথে ফিরিয়ে আনে। কিন্তু দেখা যায় মানুষ জড়িয়ে পড়েছে যুদ্ধে, বিভিন্ন অঞ্চল দখল করার জন্য গড়ে তুলেছে সশস্ত্র বাহিনী। শুরু হয়েছে দাসপ্রথা। এমন একটি প্রেক্ষাপটে উপন্যাসের নায়ক কিহার আগমন ঘটে। এরপরে কী ঘটে কিহার জীবনে, মহাকাশযান এবং এর অধিবাসীদের ভাগ্যেই বা কী ঘটে তা নিয়েই এগিয়েছে গল্প। মুহম্মদ জাফর ইকবালের এই সায়েন্স ফিকশন জাতের দিক থেকে ‘Space Opera’। তবে এতে কিছুটা ‘Post- apocalyptic’ জাতের ফিকশনের ছোঁয়াও পাওয়া যায়। মুহম্মদ জাফর ইকবাল সব জাতের সায়েন্স ফিকশনে সিদ্ধহস্ত। তিনি সাধারণত ‘সায়েন্স ফ্যান্টাসি’তে অভ্যস্ত নন, বিজ্ঞানের সূত্রগুলো তাঁর কাহিনীতে খুব কঠিনভাবে মেনে চলেন। “পৃ” উপন্যাসেও তার ব্যত্যয় ঘটেনি। উপন্যাসে সমাজবিজ্ঞান এবং মনোবিজ্ঞানের কিছু জটিল বিষয়ও ঢুকে গেছে; যেমন- নৈতিকতা, নেতৃত্ব, স্বার্থপরতা, দাসপ্রথা। এসব বিষয় লেখক সচেতনভাবে প্রবেশ করিয়েছেন কিনা তা জানার উপায় নেই, কিন্তু এসব বিষয়ের আগমন খুব প্রাসঙ্গিক-ভাবেই ঘটেছে। নেতৃত্বের জন্য মানুষের যে উচ্চাকাঙ্ক্ষা তা খুব নগ্ন-ভাবে ফুটে উঠেছে এ উপন্যাসে। উপন্যাসের নায়িকা ‘লেন’এর কিছু উক্তি শেয়ার করার লোভ সামলাতে পারছি না- “ এই যে নেতৃত্বের কথা বলছে সেটা নিয়ে আমার খুব কৌতূহল। আমার খুব জানতে ইচ্ছে যে মানুষ যদি খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী হয় তাহলে সত্যিই কি স্বার্থপর হয়ে যায়? নিজের সিদ্ধান্ত- সেটা ভালো হোক আর খারাপ হোক- অন্যের ওপর চাপিয়ে দেয়? অন্যেরা সেটা মুখ বুজে মেনে নেয়?” উপন্যাসে কাহিনী বর্ণিত হয়েছে প্রথম পুরুষে, নায়কের দৃষ্টিতে। উপন্যাসের প্লট এবং এর বিস্তার লক্ষ্য করলে বোঝা যায় যে এটি একেবারে সঠিক সিদ্ধান্ত ছিলো লেখকের। রহস্য বজায় রাখার স্বার্থে এটি খুবই কার্যকর প্রমাণিত হয়েছে এই উপন্যাসের ক্ষেত্রে। মুহম্মদ জাফর ইকবালের গল্পগুলোতে দেখা যায়- শুভ-অশুভের দ্বন্দ্বে সবসময় পরাজিত হয় অশুভ শক্তি। ব্যাপারটি নিয়ে কিছু সমালোচনা হয়েও লেখক তাঁর লেখার স্টাইল পাল্টান নি। সম্ভবত তাঁর পাঠক-শ্রেণীর (যাদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু-কিশোর) দিকে তাকিয়েই। লেখক শিশু-কিশোরদের কাছে অশুভ শক্তিকে শুভ শক্তির চেয়ে শক্তিশালী হিসেবে উপস্থাপন করতে চান নি। তিনি সর্বদা আশাবাদীর দলে থাকবেন বলেই ঘোষণা দিয়েছেন। এই আশাবাদ তিনি ছড়িয়ে দেন তাঁর লেখায়। উপন্যাস শেষ হয়েছে এভাবে- “এ শিশুরা আমাদের জন্যে নতুন পৃথিবী গড়ে তুলবে। ভালোবাসাময় আনন্দের একটা পৃথিবী”। এ প্রত্যাশা আমাদের সবারই। সাজেদুল ওয়াহিদ
Science-Fiction
4
লেখকঃ টমাস হ্যারিস অনুবাদকঃ মোহাম্মদ নাজিম উদ্দিন প্রকাশনীঃ বাতিঘর প্রকাশনী ডক্টর হ্যানিবাল লেকটারের প্রথম উপাখ্যান ‘রেড ড্রাগন’। যদিও পুরো বইয়ে তার উপস্থিতি খুবই কম। অবশ্য তার ছায়া পুরো বই জুড়েই ছিলো। মূল কাহিনী গড়ে উঠেছে এক উন্মাদ সিরিয়াল কিলারকে নিয়ে, একের পর এক পরিবার খুন করে যাচ্ছে সে। কেস সলভ করতে ডাকা হয় অবসরপ্রাপ্ত উইল গ্রাহামকে। সিরিয়াল কিলার আর তদন্তকারী দুজনের পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়েছে কাহিনী। পুরো বই জুড়েই রয়েছে অসাধারণ রোমাঞ্চ। লেখক সিরিয়াল কিলারের উন্মাদগ্রস্ততার বেশ ভালো মনোবৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দিয়েছেন। আর একদম শেষের দিকে পাঠকের জন্য রয়েছে আরেকটি চমকে দেবার মত ঘটনা। অনুবাদও যথেষ্ট ঝরঝরে। সব মিলিয়ে অবশ্যই পড়ে দেখার মত একটি বই।
Thriller
1
বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ড সামরিক ও গোয়েন্দা ব্যর্থতার প্রামাণ্য দলিল গ্রন্থটি শ্রাবণ প্রকাশনী থেকে ২০১৬ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে প্রকাশিত হয়। বইটির মূল্য ১৫০ টাকা এবং এতে পৃষ্ঠা রয়েছে ৭৮। বইটির লেখক জাহিদ নেওয়াজ খান পেশাজীবনে একজন সাংবাদিক। ময়মনসিংহ শহরে তিনি জন্মগ্রহণ করেন এবং সেখানেই বেড়ে ওঠেন। তিনি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পাশ করেন। তাঁর পেশাজীবন শুরু হয় বিচিন্তার মধ্য দিয়ে। তারপর সাপ্তাহিক প্রিয় প্রজন্ম-এ কাজ করেন। এছাড়াও তিনি অসংখ্য পত্রিকায় কাজ করার অভিজ্ঞতা লাভ করেন। সাংবাদিকতার উপর তাঁর একাধিক বই রয়েছে। বর্তমানে জাহিদ নেওয়াজ খান চ্যানেল আই অনলাইনের এডিটর ও নিউজের বার্তা সম্পাদক। বঙ্গবন্ধু হত্যার নৃশংস ঘটনা এই গ্রন্থের বিষয়বস্তু। গ্রন্থটিতে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের সংক্ষিপ্ত কিন্তু সুস্পষ্ট বক্তব্য পেশ করেন জাহিদ নেওয়াজ। বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ড, বিচার প্রক্রিয়া, বঙ্গবন্ধুর নিরাপত্তা প্রদানে সামরিক ও গোয়েন্দা বাহিনীর ব্যর্থতা, হত্যাকাণ্ডে জড়িত ব্যক্তি ও সাক্ষীদের বক্তব্যসহ বিভিন্ন বিষয় গ্রন্থটিতে উঠে এসেছে। এছাড়াও চারনেতা হত্যার ঘটনাটিও উক্ত গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে। লেখক জাহিদ নেওয়াজ অত্যন্ত সাবলীল ও প্রাঞ্জল ভাষায় হত্যাকাণ্ডের বিস্তারিত বিবরণ দিয়েছেন। এতে তিনি সামরিক অফিসার, গোয়েন্দাবাহিনী এবং বিভিন্ন ঊর্ধ্বতন কমকর্তা ও কর্মচারিদের বক্তব্য পেশ করে বইটিকে আরো সহজবোধ্য করে তুলেন। বঙ্গবন্ধু হ্ত্যাকাণ্ডের পূর্বপ্রস্তুতি, পরিবারের সদস্যদের হ্ত্যার দৃশ্যও তিনি গ্রন্থটিতে অত্যন্ত দক্ষতার সাথে তুলে ধরেন। এছাড়াও বঙ্গবন্ধুর ধানমণ্ডির ৩২ নং বাড়িতে হত্যকাণ্ড শুরু করার পূর্বে শেখ মণি ও সেরবিনায়তের বাড়ির হত্যাযজ্ঞের দৃশ্যটিও উক্ত গ্রন্থে আলোচিত হয়েছে। বইটি পাওয়ার জন্য ভিজিট করুন: https://www.rokomari.com/book/110789 অথবা ফোন করুন ১৬২৯৭
Political
3
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_ডিসেম্বর উপন্যাসঃ বরফ গলা নদী লেখকঃ জহির রায়হান প্রকাশনীঃঅনুপম ধরনঃচিরায়ত মুল্যঃ ১৪০ টাকা কাহিনী সংক্ষেপঃ মধ্যবিত্ত পরিবার গুলো আসলে কিভাবে বেঁচে থাকে?? তাদের কি কখনো শখ হয়?? শখ আহ্লাদ করা কি তাদের সাধেনা?? আর এইসব শখ কি আসলেই তাদের পুরন হয়?? গল্পটি শুরু হয় এক মধ্যবিত্ত পরিবারের বর্ননা দিয়ে। যেখানে রয়েছে সালেহা বিবি, মরিয়ম,দুলু,খোকন, হাসিনা,মাহমুদ, হাসমত আলী র মতো চরিত্র গুলো। পরিবারের অভিবাবক হলো সালেহা বিবি এবং হাসমত আলী। তাদের ছেলেমেয়েরা হলেন মাহমুদ, মরিয়ম,দুলু এবং খোকন। মাহমুদ সবাড় বড়, মরিয়ম হলো বাড়ির বড় মেয়ে, দুলু ছোট মেয়ে আর খোকন হলো ছোট ছেলে। পরিবারের অবস্থা খারাপ দেখে মাহমুদ কেই হাল ধরতে হয়েছে সংসারের। আর শুধু মাহমুদের টাকায় সংসার চলেনা যার জন্য মরিয়ম অনেক কষ্টে একটা টিউশন খুজে নিয়েছে, সে পড়াই একজন মেয়েকে, যার নাম হাসিনা। মাহমুদ চাকরি করে এক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে যার নেই কোন পিছুটান। তার মুখ থেকে কখনো ভালো ব্যবহার কেউ আশা করেনা খুব বদমেজাজী, রগচটা স্বভাবের। মধ্যবিত্ত পরিবারের সদস্য আর অল্প বয়সে পরিবারের পুরো দায়িত্ব নিজের কাঁধে তুলে নিয়েই যেন তার মুখের হাসি মলিন হয়ে গেছে, বাস্তবতার কষাঘাতে জর্জড়িত জীবনের কাছ থেকে যেন মাহমুদের আর কোন প্রাপ্তি নেই। অন্যদিকে মরিয়ম এই পরিবারের মেয়ে হয়েও পরিবারকে খুব আগলে রাখতে চাই। তার বেতনের সামান্য কটা টাকা দিয়েই যেন সে পুরন করতে চাই তার ছোট ভাই বোন দুলু এবং খোকনের আবদার। তাইতো মাঝে মাঝে তার নিজের গিফট পাওয়া জিনিস গুলোও সে অনায়াসে দিয়ে দেয় ছোট বোন দুলু কে। অন্যদিকে ছোট বোন দুলু স্বপ্ন দেখতে বেশি ভালোবাসে। তার চাহিদার শেষ নেই যেন। অবশ্য এ নিয়েই কম বকা খায়না দুলু মায়ের কাছে, তখন মরিয়ম মা কে থামিয়ে দেয়, বকা দিতে বারন করে দুলুকে।। এ যেন মা মেয়েদের বাস্তবতার খুনসুটি। হঠাৎ করেই দেখা যায় মরিয়ম যেখানে পড়াতে যাই সেখানে পরিচয় হয় একটি ছেলের সাথে। ছেলেটির নাম মনসুর। ধনীর দুলাল সে। ছাত্রীর আত্মীয় হলেও রোজ মনসুর হাসিনার বাড়িতে আসে মরিয়মের জন্য। কারন সে মরিয়মকে অনেক পছন্দ করে। যখন মরিয়ম এই কথা জানতে পারে তখন অনেক বোঝানোর চেষ্টা করে।যখন আর লাভ হয়না তখন মনসুরের ভালোবাসার কাছে পরাজয় স্বীকার করে মরিয়ম। কিন্তু এই বিয়েতে বাঁধ সাধে মাহমুদ। কারন সে দুচোখে ধনীদের দেখতে পারেনা, ঘৃনা করে মনে মনে। পরিবারের সবার সম্মতির কাছে মাহমুদের কথা তেমন খাটেনা তাই মরিয়মের সাথে বিয়ে হয়ে যায় মনসুরের। এবং খুব ভালো দিনকাল চলতে থাকে। কিন্তু হঠাৎ করেই এক অতীত সামনে চলে আসে মরিয়ম মনসুরের জীবনে। সুখের সংসার টা তে পুরো আগুন লেগে যায়।। মনসুর পরিবর্তন হতে থাকে এবং অবশেষে সহ্য করতে না পেরে মরিয়ম তার জামা কাপড় নিয়ে চলে আসে বাবা মায়ের বাড়িতে ভাবতে থাকে সুখের দিনগুলোর কথা। কি সমস্যা তাদের মধ্যে এই কথা মরিয়ম কাউকে জানতে দেয়ার আগেই সে রাতে ঘটে এক বিপর্যয়। পুরো পরিবার এলোমেলো হয়ে যায় আর বাস্তবতার কাছে নিজেকে সঁপে দেওয়া মাহমুদ পুরোপুরি ভেঙে পড়ে। কি হয়েছিলো সে রাতে?? আর মাহমুদ কিভাবে সামাল দেবে সবকিছু?? অন্যদিকে মনসুর আর মরিয়মের মধ্যের সমস্যা কি কখনোই আর বাইরের কেউ জানতে পারবেনা?? এগুলোর উত্তর পাওয়া যাবে এই উপন্যাসে কারন সব প্রশ্নের উত্তর আছে এই বইটিতেই। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ জহির রায়হানের লেখার মধ্যে একটা আলাদা ভাব আছে। তার প্রত্যেক বইয়ে সমাজের বাস্তব প্রতিচ্ছবি কিভাবে যেন প্রকাশ পায়। বইটার প্রকাশকাল অনেক আগে। তারপরও সে সমাজের মধ্যবিত্ত শ্রেনীর মানুষের দুঃখগুলো বুঝেছেন তার সমস্ত মন দিয়ে এবং লিখে গিয়েছেন এরকম উপন্যাস। বইটিতে রয়েছে দম বন্ধ করা গভীর বিষাদ, হঠাৎ করেই মানুষের জীবনটা থমকে গেলে যে বিষাদ অনুভব হয় বইটি যেন তারই প্রতিচ্ছবি। আশা করি ভালো লাগবে সবার।।।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা নাম: রাইফেল,রোটি,আওরাত লেখক: আনোয়ার পাশা প্রকাশনা: স্টুডেন্ট ওয়েজ মূল্য: ২৫০৳ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক আনোয়ার পাশার উপন্যাস "রাইফেল,রোটি,আওরাত" এর প্রথম পরিচয় হচ্ছে এটি বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা প্রথম উপন্যাস।উপন্যাসিক এটি লেখা শুরু করেন ১৯৭১ সালের এপ্রিলে এবং শেষ করেন জুন মাসে,রাজনৈতিক ঘটনা প্রবাহের মধ্যে লেখার কারণে উপন্যাসটি হয়ে উঠেছে একটি জীবন্ত ইতিহাস। উপন্যাসের ভূমিকায় কাজী আবদুল মান্নান লিখেছেন, "মানুষ এবং পশুর মধ্যে বড় একটা পার্থক্য হচ্ছে,পশু একমাত্র বর্তমানকেই দেখে,মানুষ দেখে অতীত,বর্তমান এবং ভবিষ্যতকে এক সঙ্গে বিবেচনা করে।যখন কোন ব্যক্তি এবং সমাজ একমাত্র বর্তমানের মধ্যেই আবর্তিত হতে থাকে তখন সর্বনাশের ইশারা প্রকট হতে থাকে।" লেখক আনোয়ার পাশা যুদ্ধক্ষেত্রে বসেই তৎকালীন সময়ের প্রতিটা মুহুর্তের কাহিনী চিত্রিত করেছেন এই উপন্যাসে এবং উপন্যাসটি শেষ করেছেন, "নতুন মানুষ,নতুন পরিচয় এবং নতুন একটি প্রভা।সে আর কতো দূরে।বেশি দূর হতে পারে না।মাত্র এই রাতটুকু তো।মা ভৈঃ।কেটে যাবে।" যুদ্ধের মাত্র ৪মাসের মাথায় লেখক নতুন একটি দেশের ভবিষ্যৎ দেখেছেন,আশা জাগিয়েছেন সকলের মাঝে।শুধুমাত্র মানুষ নন,একজন দুরদর্শী সম্পন্ন মানুষ হওয়াতেই তিনি শুনেছেন নতুন একটি দেশের জন্মের কড়া নাড়া।অথচ এই আশাবাদী মানুষটিই শেষ পর্যন্ত ১৪ই ডিসেম্বর হারিয়ে যান চিরতরে,পারেন নি তাঁর স্বপ্ন পূরণ হওয়া দেখতে। উপন্যাসের আড়ালে এই ইতিহাসের রিভিউঃ উপন্যাসের কেন্দ্রীয় চরিত্র বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সুদীপ্ত শাহীন।এই সুদীপ্ত শাহীনই যেন আনোয়ার পাশা,তিনিই যেন বিপন্ন,বিধ্বস্ত,আশা জাগানিয়া বাংলাদেশ।আত্মজৈবনিক এই উপন্যাসের অন্যান্য চরিত্র-সুদীপ্ত শাহীনের স্ত্রী মীনাক্ষি,মহিউদ্দিন ফিরোজ ও তাঁর স্ত্রী,রাজাকার মালেক।এছাড়াও জ্যোতির্ময় গুহঠাকুরতা,অধ্যাপক মুনিরুজ্জামানের মতো বুদ্ধিজীবীরা। মূলত মুক্তিযুদ্ধের শুরুতে ঢাকাবাসীর রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা ও জীবনযাত্রার নির্ভেজাল চিত্র ফুটে উঠেছে উপন্যাসে।যেমন- সুদীপ্ত শাহীন পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম জঘন্য হত্যাকান্ডের সাক্ষী হলেও তাঁর উন্নত মানবিকতার পরিচয় পাওয়া যায় যখন ওয়াজেদ বলেন- ওয়াজেদ যখন বলে 'সময় এলে এবার দেখবেন স্যার, দেশকে বিহারিশূন্য করে ছাড়ব।' তখন সুদীপ্ত উত্তর দেন ''কাজটা সেই পাঞ্জাবিদের মতো হবে, আমরা এখন যাদেরকে প্রবলভাবে ঘৃণা করছি। আমরা চাইছি নির্ভেজাল গণতন্ত্র! তার অন্যতম মূল কথাটি হচ্ছে বিনা বিচারে অন্যায়ভাবে কাউকে শাস্তি দেওয়া হবে না। এবং মতামতের স্বাধীনতার সঙ্গে তার দায়-দায়িত্বটাও হবে প্রত্যেকের ব্যক্তিগত।'' আবার, ২৫শে মার্চ রাতে স্বামী মনিরুজ্জামানের লাশের পাশে আহত জ্যোতির্ময়গুহ ঠাকুর্দাকে পেয়ে যখন মনিরুজ্জামানের স্ত্রী বাসন্তী গুহঠাকুর্দার দরজায় আঘাত করে বলেন 'দিদি, বের হন। আপনার সাহেবকে ঘরে নিন। আমার সাহেব মারা গেছেন। আপনার সাহেব এখনও বেঁচে আছেন।' এই একটা মুহুর্তই আসলে মুক্তিযুদ্ধের অনেক কিছু বলে দেয়। মাত্র তিনদিনের ঘটনাবলীর সমন্বয়ে লিখিত এই উপন্যাসে এরকম আরো অসংখ্য মুহুর্ত আনোয়ার পাশা তৈরি করে গেছেন। এছাড়াও,১৯৭১ সালে ২৫ মার্চ রাতে কি হয়েছিল? কিসের প্রেক্ষিতে হয়েছিল?কেন হয়েছিল?সব প্রশ্নের উত্তর রয়েছে এই বইতে। পাঠ প্রতিক্রিয়াঃ সাহিত্যিক আবুল ফজল লিখেছেন-"বাংলাদেশের মাটিতে আগামীতে যারা জন্মগ্রহণ করবে,তারা এ দেশের ইতিহাসের এক দুঃসহ ও নৃশংস অধ্যায়ের এ নির্ভেজাল দলিল পাঠ করে নিঃসন্দেহে শিউরে উঠবে।" সত্যিই এতো নিঁখুত করে একাত্তরের চিত্র ফুটিয়ে তোলার কারণেই উপন্যাসটি হয়ে উঠেছে অনন্য ও স্বতন্ত্র।ইতিহাসের কোনো রেটিং হয় না,তাই এই বইয়ের কোনো রেটিং নেই।
War
5
“হৃদয়ের দখিন দুয়ার” -আবদুল্লাহ আল ইমরান “মাথা নিচু করে দাঁড়িয়ে আছে অবন্তী।শত বেদনার ফুল ফুটে আছে অভিমানি নতমুখে।কাঁধ ছেড়ে নয়ন এবার অবনত মুখটা তুলে আনে,যেন আঁজলা ভরা টলমলে হাওরের জল উঠিয়েছে হাতে।ডাহুক চোখে তাকিয়ে থাকে অবন্তী।কত কথা বলতে চাওয়ার আকুলতা সে চোখে!সে আকুলতা মাখা চোখের দিকে তাকিয়ে নয়ন বলে,”তুমি নেই,তবু শহরের প্রতিটা মোড়ে তোমাকে দেখতে পাই আমি।দেখি বিবর্ণ দুই প্রতীক্ষিত চোখ।তোমাকে ভাবলে, মুহূর্তটা রঙিন হয়ে ওঠে। আমার কাছে তুমি মানেই স্মরণ যোগ্য দিন। গত দেড়টা বছর কীভাবে কেটেছে, কীভাবে তোমাকে ছাড়া থেকেছি, একটা বার জানতে চেয়েছো অবন্তী?” গল্পটা নয়ন আর অবন্তীর...দারুণ মায়াময় এক কাছে আসার গল্প,কাছে আসতে আসতে আবার দুরে সরে যাওয়ার গল্প।ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া নয়ন একজন কবি। অবন্তী তারই সহপাঠী। গল্পের পটভূমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় হওয়ায়, বারবার ফিরে যাচ্ছিলাম নিজের বিশ্ববিদ্যালয় জীবনে।দারুণ উপভোগ্য এই ফিরে যাওয়া।নয়ন যেহেতু একজন কবি, লেখকের নিজের লেখা কবিতার ব্যবহার কাহিনীর গভীরতা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। “জলের কিনারে জল,ছুঁয়ে যায় ঢেউ, ভালোবেসে দূরে থাকে তবু কেউ কেউ।” তবে দিনশেষে গল্পটা শুধু নয়ন আর অবন্তীর মাঝেই আটকে থাকেনি..মানবিক আরও সব সম্পর্কগুলো দারুণ ভাবায়,হৃদয় ছুয়ে যায়।পথশিশুদের জন্য নয়নের স্কুল” আকাশভরা তারা” আর ছাত্র রহমতের সাথে নয়নের আত্মিক সম্পর্ক..বা কিশোর রিকশাওয়ালা আবদুল্লাহ ..সমাজের ‌অসংগতি গুলোই তুলে ধরে আমাদের সামনে।একটু কি অপরাধবোধও জাগায় না মনে?হৃদয়ের দখিন দুয়ার শুধু দুজন মানব-মানবীর সম্পর্কের টানাপোড়েন নয় বরং ঢাকা শহরের সমসাময়িক অবস্হা, দেশের রাজনৈতিক এবং সামাজিক চিত্রও একেছে খুব দরদের সাথে। এমনকি আমাদের মুক্তিযুদ্ধও এসেছে খুব প্রাসঙ্গিক ভাবে।নয়নের ক্রিকেট কোচ আশিস দা অথবা অবন্তীর বড় বোন শ্রাবন্তীর জীবনের রট্র্যাজিককাহিনী..হৃদয়ে সত্যিই হাহাকার জাগায়।গল্পের শেষভাগে হাওড় অন্চলের বর্নণা এবং গানের ব্যবহার খুবই উপভোগ্য। কাহিনীর শেষ ভাগে নয়ন আর অবন্তীর জন্য মন কেমন করা অনুভূতি...চোখে জল এনে দেয়.. “তুমিও ভীষণ কষ্টে আছো জানি প্রবল স্রোতে ভাঙছে বুকের পাড় সব হারানো মানুষ যেমন কাঁদে তোমার চোখেও তেমনি হাহাকার” লেখকের জন্য শুভকামনা।খুবই পরিণত এবং গোছানো লেখা।পাঠকের আবেগ ছুঁয়ে যায়।He is gifted by his writing ability..
Fiction
0
শেষ না করে উঠতে পারলাম না। অসম্ভব মেশানো সব ভালো লাগা এবং ভালোবাসা। আমি মন্ত্রমুগ্ধ!!
Fiction
0
জাফর ইকবাল স্যারের অন্যান্য সব লেখা থেকে এই লেখাটি একটু ব্যতিক্রম। কিন্তু তারপরও এটি আমার মতে তার শ্রেষ্ঠ কিশোর উপন্যাসগুলোর মধ্যে একটি। জীবনে যত উত্থান-পতনই থাকুক না কেন, শত বৈরিতা পেরিয়েও সুস্থ মস্তিষ্কের মায়ের যেমন ছেলের প্রতি ভালোবাসার একবিন্দু কমতি হয় না, ঠিক তেমনি ছেলেও কখনো পারে না তার মাকে ভুলে থাকতে। শৈশবে জীবনের কঠোরতা মানসিকভাবে একটি ছেলেকে কিভাবে বড় করে তোলে তা স্পষ্টভাবে ফুটিয়ে তোলা হয়েছে এই বইটিতে। উপন্যাসের শেষে মা ও ছেলের মহান ভালোবাসা ও মায়ের চিরবিদায় সকল পাঠকের হৃদয়ে গভীর হাহাকার সৃষ্টি করেছে - এ ব্যাপারে কোন সন্দেহ নেই।
Childrens-Book
2
বইটির ভূমিকার শুরুতেই এ প্যারাগ্রাফটি আছে- ‘উইনস্টন চার্চিলের ভাষায় বলতে গেলে বাংলাদেশ একটি রহস্যঘেরা প্রহেলিকাচ্ছন্ন হেঁয়ালি (a riddle wrapped in mystery inside an enigma)। একদিকে এখানে প্রাকৃতিক সম্পদের প্রকট অপ্রতুলতা সত্ত্বেও উল্লেখযোগ্য অর্থনৈতিক সাফল্য অর্জিত হয়েছে; অন্যদিকে সুশাসনে নিশ্চিত অবক্ষয় ঘটেছে। বাংলাদেশের অনেক অর্জনের জন্য আমি গর্বিত। তবু রাজনৈতিক অবক্ষয় ও সুশাসনের ক্রমাগত অধোগতি আমার প্রজন্মের যারা আমার মতো গণতান্ত্রিক চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছিল, তাদের জন্য দৈহিক যন্ত্রণার চেয়েও মর্মান্তিক মানসিক যন্ত্রণার সৃষ্টি করেছে। এ গ্রন্থের জন্ম এই যন্ত্রণাবোধ থেকেই।’ ওপরের উদ্ধৃতিটির শেষ বাক্যটির প্রতি সব পাঠকের দৃষ্টি আর একবার আকর্ষণ করি। আর ৪৩৯ পৃষ্ঠার বইটির শেষ দিকে ৪০২ পৃষ্ঠায় আছে এই প্যারাগ্রাফটি- ‘বক্ষ্যমাণ গ্রন্থে বাংলাদেশের রাজনৈতিক সমস্যা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে। পূর্ববর্তী ১৪টি অধ্যায়ে ছোট-বড় মিলে শতাধিক সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরা হয়েছে। বাস্তবতা হল, এ ধরনের বেশিরভাগ সংস্কারের অদূর ভবিষ্যতে বাস্তবায়নের সম্ভাবনা খুবই কম। এই গ্রন্থে যেসব সংস্কারের প্রস্তাব করা হয়েছে, সেগুলো সম্পর্কে কয়েকটি প্রশ্ন অবশ্যই উঠবে।’ তিন. বইটির শেষ ১৫ পৃষ্ঠার নির্ঘণ্ট বাদে বাকি ৪২৪ পৃষ্ঠায় আকবর আলি খান সমসাময়িক বাংলাদেশের জন্য প্রযোজ্য, হেন কোনো বিষয় নেই যে আলোচনা করেনি এবং আলোচনা বিশ্লেষণ শেষে সুপারিশ বা মন্তব্য দেয়নি। বাংলাদেশে আধিপত্যবাদ ও জাতীয়তাবাদ (পৃষ্ঠা-৭৪) বিষয়ে বাংলাদেশ-ভারত সম্পর্ক বিশ্লেষণ করতে গিয়ে আকবর আলি খান বাংলাদেশে ভারতের প্রথম ডেপুটি হাইকমিশনার এবং পরে ভারতের ফরেন সেক্রেটারি জেএন ডিক্সিটের (দীক্ষিত) বই ‘লিবারেশন অ্যান্ড বিয়ন্ড’ বইটি থেকে একটি উদ্ধৃতি দিয়েছে। চল্লিশ-পঁয়তাল্লিশ বছর আগে ডেপুটি হাইকমিশনার হিসেবে লব্ধ অভিজ্ঞতার আলোকে এ বর্তমান সময়কালেও এই কথাগুলো প্রশ্নাতীতভাবেই খুব প্রাসঙ্গিক মনে হয়। তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি সম্পাদনে ভারতীয়দের সাম্প্রতিক কয়েক বছরের দৃষ্টিভঙ্গি দীক্ষিতের ৪০ বছর আগের ‘অ্যাসেসমেন্টের’ সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ বলে মনে হয় না। নিচে দীক্ষিতের সেই উদ্ধৃতিটি- ‘বাংলাদেশের ক্ষেত্রে সবচেয়ে শক্তিমান আঞ্চলিক আধিপত্যবাদ হচ্ছে ভারতীয় আধিপত্যবাদ। এ প্রসঙ্গে ভারতীয় উদার কূটনীতিবিদ জে এন দীক্ষিত যথার্থই লিখেছেন- The point to be remembered is that India looms large in maû ways in Bangladesh's domestic politics and foreign policy. India is too overarching and too proximate to be ignored. It is also too proximate and asymmetrical identity to have a close relationship with. This is the Bangladesh. সৌহার্দ্যে ও প্রতিযোগিতায়, ভালোবাসায় ও বিদ্বেষে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্ক অনন্য।’ বাংলাদেশের ইতিহাস আলোচনায় তার বইতে গঙ্গাঋদ্ধি, মৌর্য সাম্রাজ্য, উষাণ যুগ, গুপ্ত সাম্রাজ্য, শশাঙ্ক, পাল সাম্রাজ্য, সেন যুগ, দিল্লিকেন্দ্রিক মুসলমান সাম্রাজ্য, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য- কিছু বাদ পড়েনি। পাল যুগে এ অঞ্চলে গণতন্ত্রের চর্চা ছিল, তারও উল্লেখ আছে বইতে। আবার প্লেটোর মতো জগৎবিখ্যাত গ্রিক দার্শনিক যে গণতন্ত্র পছন্দ করতেন না, তাও বইটিতে আছে। বাঙালি ও বাংলাদেশি জাতীয়তাবাদ নিয়েও আলোচনা আছে। এক ধর্মাবলম্বী হলেও যে এক জাতি হয় না, আমরা তা রক্ত দিয়ে দেখিয়েছি। আর এক ভাষাভাষী এবং এক ধর্মাবলম্বী হলেই যে এক জাতি হবে তাও ঠিক নয়। তাই যদি হবে, তাহলে আরবদের মধ্যে এতগুলো দেশ কেন? আর বাংলাদেশে আমরা এক সুন্নি-তরিকার হয়েও ‘জোয়াল্লিন’ ও ‘দোয়াল্লিন’ উচ্চারণে ভিন্নতর কারণে কেমন বিবাদ-বিসংবাদের সৃষ্টি হতে পারে, তার উদাহরণও দিয়েছে আকবর আলি খান। এ প্রশ্নে ফেনী জেলায় আমার এলাকার সুন্নি-মুসলমানদের মধ্যেই লাঠালাঠি আমার সামনেই ঘটতে দেখেছি আমাদের শৈশবে। পাকিস্তান সৃষ্টির আলোচনাটি আমার কাছে খুব আমোদজনক মনে হয়েছে। ১৯৪০ সালে লাহোর প্রস্তাবে পাকিস্তান শব্দটিই ছিল না। ১৯৪৬ সালে লাহোর প্রস্তাব সংশোধনের প্রস্তাব এনেছিলেন শহীদ সোহরাওয়ার্দী। মূল প্রস্তাবের 'States' শব্দটির 's' বাদ দেয়া হয়েছিল, আর তাতে একাধিক মুসলমানপ্রধান রাষ্ট্রের জায়গায় শুধু একটি মাত্র রাষ্ট্রের দাবি করা হয় তখন সংশোধিত প্রস্তাবে। কিন্তু আকবর আলি খানের মন্তব্য- এ সংশোধনটি আনা হয়েছিল সংসদ সদস্যদের একটি কনভেনশনে। কিন্তু এ সদস্যদের এই এখতিয়ারই ছিল না। কারণ মূল প্রস্তাবটি গৃহীত হয়েছিল মুসলিম লীগের একটি সভায় লাহোরে। সংশোধনটি আনার ক্ষমতা ছিল মুসলিম লীগেরই, দলীয় সাংসদদের কনভেনশনে নয়। তারপর এক বছর চার মাস চারদিনের মাথায় পাকিস্তান সৃষ্টি হয়ে গেল! দাবি তোলার পর এত দ্রুত, এত অল্প সময়ে একটি দেশ সৃষ্টির উদাহরণ কি আর একটি আছে, প্রশ্নটি আমার। আমার এ প্রসঙ্গে আরও একটি প্রশ্ন, পাকিস্তান শব্দটি পাকিস্তান মুসলিম লীগ বা জিন্নাহ সাহেব কখন প্রথম ব্যবহার করলেন? বইটিতে তা দেখলাম না। দেখিনি আগেও আর কোথাও। বাংলাদেশের বর্তমান সংকটগুলোর সম্ভাব্য সমাধান দিয়েছে আকবর আলি খান। ইলেকশন কমিশনের দুর্বলতা, নির্বাচিত কেয়ারটেকার সরকার, আমাদের সরকারপ্রধানরা যে এখন বড় বড় সাম্রাজ্যের সম্রাটদের চেয়েও বেশি ক্ষমতাবান, তাদের ক্ষমতার এমন কেন্দ্রীভূত হওয়ার কারণে বর্তমান শাসন ব্যবস্থা এখন আর মন্ত্রিপরিষদ-চরিত্রের সরকার নয়; বরং এখন এটি প্রাইম মিনিস্টারিয়েল ফরমের সরকার হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং এ ক্ষমতা সুশাসনের জন্য কমানো দরকার, এসব কথাও আছে। উন্নয়ন বনাম গণতন্ত্র বিষয়টি নিয়েও আজকাল আলোচনা হচ্ছে। এ প্রশ্নে আকবর আলি খান সিঙ্গাপুরের ‘ভিশনারি’ নেতা লি কুয়ান ইউ এবং নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনকে উদ্ধৃত করেছে। গণতন্ত্র ছাড়াও কেন কোনো কোনো দেশে ব্যাপক উন্নয়ন ঘটেছে, আবার কোথাও কোথাও একনায়কেরা কেন তা অর্জন করতে পারল না, তার ব্যাখ্যাও আছে। আছে, গণতন্ত্র থাকলে উন্নয়ন যে টেকসই হয়, তার উদাহরণ। এ প্রসঙ্গে বলতে পারি, গুজরাটে নরেন্দ্র মোদির গণতান্ত্রিক মুখ্যমন্ত্রিত্বকালে তো গুজরাটে ব্যাপক উন্নয়ন অর্জিত হয়েছে। আরও বড় উদাহরণ গণতান্ত্রিক ভারতে বড় কোনো দুর্ভিক্ষ হয়নি। কিন্তু একদলীয় একনায়ক মাও সে তুংয়ের চীনে এক দুর্ভিক্ষেই মারা যায় তিন কোটি চাইনিজ, ১৯৫৯-৬১ সালে মাত্র তিন বছরে। ব্যর্থ রাষ্ট্রের কথাবার্তাও আছে। তবে এত বছর ধরে ব্যর্থ রাষ্ট্র (ফেইলড স্টেটস) বলে যা জেনে এসেছিলাম, আকবর আলি খানের এ বইতে তা দেখছি- ভঙ্গুর রাষ্ট্র ‘ফ্র্যাজাইল স্টেটস’ (Fragile states) নামে ব্যবহৃত হতে। চার. বাংলাদেশের উচ্চমানের একটি প্রকাশনা সংস্থা ‘প্রথমা’ প্রকাশিত ৭০০ টাকা দামের এ বইটি পড়ে অনেক কিছু জেনেছি। পুরনো, আগে জানা অনেক বিষয় আবার নতুন করে ঝালাইও করে নিতে পারলাম। যেমন ব্রিটিশ ভারতের শেষ ভাইসরয় লর্ড মাউন্ট ব্যাটেনের স্ত্রী এডউইনা কীভাবে ভারত বিভাগের পক্ষে নেহেরুকে পটাতে পারলেন। বইটিতে ইকবাল আহমেদ নামের এক গবেষকের উল্লেখ আছে যিনি মনে করেন, নেহেরুর সঙ্গে এডউইনার শারীরিক সম্পর্কও ছিল। দুটি বিষয়ে আমি বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছি। বাংলাদেশে দৃশ্যমান উন্নয়ন ঘটছে ঠিকই, এতে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্যও তো বাড়ছে। এ বৈষম্য পরিমাপ করা হয় জিনি সহগ (Gini Co-efficient) মাধ্যমে। এ ফর্মুলার মূল কথা হল, যে দেশে ০ (জিরো) সহগ, সেই দেশে কোনোই বৈষম্য নেই; আবার যে দেশে ‘১’ সহগ- সেখানে চরম বৈষম্য। তো বাংলাদেশের এ সহগ ৯১-৯২-তে ছিল ০.৩৮৮; ২০১০-এ ০.৪৬। তার পরের হিসাব নেই বইতে। আমার আশঙ্কা, তা আরও বেড়েছে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে। এ ক্রমবর্ধমান বৈষম্য কমাতে সরকারের পক্ষ থেকে কোনো বিশেষ উদ্যোগ চোখে পড়ছে না। আরেকটি বিষয়, সুশীল সমাজ সম্পর্কে তার আলোচনা এবং এই শব্দগুচ্ছের সংজ্ঞায়ন। সিভিল সোসাইটির বাংলা অর্থ ‘সুশীল সমাজ’ গ্রহণ করেনি গ্রন্থকার। সিভিল সোসাইটিকে বাংলায় ‘সিভিল সমাজ’ হিসেবে ব্যবহার করেছে আকবর আলি খান। ‘সিভিল সমাজ’-এর নিচে উদ্ধৃত সংজ্ঞাটি আমার কাছে যথার্থ মনে হয়েছে- সিভিল সমাজের আন্তর্জাতিক সংগঠন Civicus World Alliance for Citizen Participation সিভিল সমাজের নিম্নরূপ সংজ্ঞা নির্ধারণ করেছে : The arena outside of the family, the state and market where people associate to advance common interest. দেশে বর্তমান ক্ষমতাসীনরা সিভিল সমাজকে যেমন আক্রমণ করে কথা বলে, তাতে আমার মনে হয়, এতে তাদের অসততাই প্রকাশ পায়। ৬০-এর দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কিছু শিক্ষক, সাংবাদিক এবং বুদ্ধিজীবী ৬ দফা প্রণয়নে এবং ‘টু ইকোনমি থিওরি’ উদ্ভাবনে যে অসাধারণ ভূমিকা রেখেছিলেন, তা এ দলবাজ হামলাকারীরা ভুলে যায় কী করে? বইটিতে কোথাও কোথাও কিছু চুটকিজাতীয় কথাবার্তা আছে। তবে বইটির প্রশংসনীয় বৈশিষ্ট্য, এটি একটি দীর্ঘ গবেষণালব্ধ সিরিয়াস কাজ। এত তথ্য, উপাত্ত এবং সারণি বইটিকে অবশ্যই সমৃদ্ধ করেছে। বইটি আমার সংগ্রহে গুরুত্বপূর্ণ রেফারেন্স বইয়ের মর্যাদায় থাকবে। একটি ইন্টারেস্টিং ব্যাপার, বইটি বাংলাদেশ নিয়েই; যেমনটা বইটির শিরোনামেই আছে। কিন্তু জাতীয় পার্টির এরশাদ ছাড়া বাংলাদেশের বর্তমান অন্য তিনটি প্রধান রাজনৈতিক দলের নেতানেত্রীর নাম একবারও দেখলাম না। তবে আছে বঙ্গবন্ধুর কথা, তার ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ থেকে দীর্ঘ উদ্ধৃতি।
Political
3
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগিতা_নভেম্বর_২০১৮ উপন্যাসঃ মা লেখকঃ আনিসুল হক প্রকাশনীঃসময় ধরনঃমুক্তিযুদ্ধের উপন্যাস মুল্যঃ৪০০টাকা মুল চরিত্রঃআজাদের মা দুনিয়াতে আসার পর প্রথম যে মানুষটার সাথে আমরা পরিচিতি লাভ করি, তিনি হলেন আমাদের সবার প্রিয় মা। কতো ত্যাগের বিনিময়ে তারা আমাদের লালন পালন করে সে গল্পটা আমাদের সবারই জানা।। আর আজকে এরকম এক মায়ের সাথে পরিচয় ঘটাবো, যার গল্পটা যদি কেউ না জেনে থাকে, তাহলে আমার কাছে মনে হবে তার বইপ্রেমী হওয়াটা বৃথা। ☺☺ মা গল্পটা মুলতো মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে লেখা উপন্যাস।। কিন্তু মুক্তিযুদ্ধ শুরুর আগে কেমন ছিলো মায়ের গল্পটা?? হুম,বলছি আজাদের মায়ের কথা।। দেশ বিভক্তের সময় সারা শহর জুড়ে,যখন সবাই "আজাদি" "আজাদি" করতো, ঠিক এমন সময় জন্ম নেয় আজাদ। তার নাম টা সেখান থেকেই রাখা হয়। ঢাকা শহরে সে সময় যতগুলো ধনী ব্যাক্তি ছিলো, তার মধ্যে আজাদের বাবা ছিলো অন্যতম। ইস্কাটনে তাদের বাড়ি ছিলো, ছিলো একটা সুখের সংসার। আজাদের মা তার কোন তুলনা ছিলোনা। এতো অমায়িক ব্যবহার,, সবাই অবাক হয়ে যেতো। শহরের সবথেকে ধনী ব্যাক্তির স্ত্রী হওয়ার পরেও ছিলোনা মনে কোন অহংকার। সবাইকে যেন এক সুতোয় বেধে রাখাটায় ছিলো তার একমাত্র ইচ্ছা। পাশাপাশি, বাড়িতে এতো কাজের মানুষ থাকার পরও নিজ হাতে সবাইকে রান্না করে খাওয়াতে খুব ভালোবাসতেন। সবকিছু ঠিক চলছিলো, কিন্তু হঠাৎ করে কি এমন ঘটে যার জন্য আজাদের মা এক কাপড়ে আজাদ কে নিয়ে বের হয়ে আসে!!!আন্তরিকতায় পরিপূর্ণ মানুষ টি চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়, আজাদ কে মানুষ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য!!! একটা টাকাও নিতে রাজি হয়না কেন তার বড় লোক স্বামীর কাছ থেকে???? আজাদ কি মায়ের প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে পারে?? নাকি বিলাসীতায় ভরপুর জীবনের জন্য আক্ষেপ করতে থাকে???কি হয় শেষ পর্যন্ত??? কি করবে আজাদ!!! এরপর শুরু হয়ে গেলো যুদ্ধ।দেশের জন্য সকল তরুনেরা ছুটছে বিভিন্ন ক্যাম্পে।।সবার লক্ষ্য একটাই স্বাধীন করতে হবে প্রিয় মাতৃভুমিকে,অবশেষে সবার মতো আজাদ ও যোগদান করে সেখানে। কিন্তু শেষ পর্যন্ত কি হয়?? শকুনদের হাত থেকে বেচে ফিরতে পারে তো আজাদ?? বইটিতে,এক সংকল্পবদ্ধ মায়ের কথা রয়েছে যিনি ১৪ বছর ভাত না খেয়ে বেচে ছিলেন শুধুমাত্র তার ছেলের প্রতিক্ষাতে,,কেন তিনি ভাত খাওয়া ছেড়ে ছিলেন?? এর পেছনে কি অন্য কোন গল্প ছিলো??মায়ের প্রতিক্ষার প্রহর কি শেষ হয়েছিলো?? এই সকল প্রশ্নের উত্তর পাওয়ার জন্য আপনাকে অবশ্যই পড়তে হবে "মা" উপন্যাস টি।বইটি পড়ার সময় অনেক জায়গায় খারাপ লাগবে, অনেক রাগ ও হবে কিছু চরিত্রের উপর।।।সব থেকে বেশি খারাপ লাগে মা যখন এক জেল থেকে আরেক জেলে দৌড়ে বেড়াচ্ছিলো ছেলের খোজে।। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ প্রথমদিকে ১৫/২০ পৃষ্ঠা পড়তে খারাপ লেগেছে।কিন্তু এই পাতা গুলো কষ্ট করে পড়ে সামনের দিকে আগালে, গল্পের প্লট আপনাকে বই এর শেষ পর্যন্ত নিতে বাধ্য। তাই দেরি না করে পড়ে ফেলুন।। আমার জীবনে পড়া শ্রেষ্ঠ উপন্যাসের মধ্যে একটি হলো এই বইটি। আশা করি ভালো লাগবে সবার।।
War
5
দর্শন, রাজনীতি, ধর্ম, অমরত্ব, বিজ্ঞান, নাটক, কাব্যকলা ইত্যাদি নিয়ে প্লেটোর ভাবনা, নিজের মত করে সাজিয়ে সুন্দর করে এই বইতে তুলে ধরা সিক্রেটস এর ভাবনা ও বহু মূল্যবান রত্নখচিত এই বইটি নিঃসন্দেহে আপনার জ্ঞান ভান্ডারে এক রঙিন পালক যোগ করবে
Political
3
নতুন সংস্করণের ভূমিকা নতুন সহস্রাব্দের প্রয়োজনকে সামনে রেখে কোয়ান্টাম মথড বইযের পরিবর্ধন ও পরিমার্জন করতে সক্ষম হওয়ায় আমরা পরম করুণাময়ের কাছে আমাদের গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।কোয়ান্টাম মেথড মেডিটেশন কোর্সের একশত ক্লাশে প্রশিক্ষণ প্রদানের প্রত্যক্ষ অভিজ্ঞতা, হাজার হাজার কোয়ান্টাম গ্রাজুয়েটের অনুভূমি এবং অসংখ্য পাঠকের অজস্র প্রশ্নের প্রেক্ষিতে পুরো বইটকে পুনর্বিন্যাস্থ করা হয়েছে, নতুন অধ্যায় যোগ করা হয়েছে, পুরানো অধ্যায়গুলোকে সমৃদ্ধ করা হয়েছে। তাই আমরা নির্দ্বিধায় বলতে পারি কোয়ান্টাম মেথডের বর্তমান সংস্করণ থেকে নতুন প্রজম্ম আরও সহজে আত্ম নির্মাণের প্রক্রিয়া আয়ত্ত করে নিজের মেধা ও সম্ভাবনাকে পরিপূর্ণরূপে বিকশিত করতে পারবেন, তাদের জীবনে সাফল্য আসবে সহজ স্বতঃস্ফুর্ততায়। কল্যাণ ও প্রশান্তিতে ভরে উঠুক সবার জীবন। মহাজাতক ১ জানুয়ারি ২০০০ সাল সূচি *মেডিটেশন : শৃঙ্খল মুক্তির পথ *যাত্রা হোক শুরু *নতুন বিশ্ব দৃষ্টি *মন : শক্তি রহস্য *চাবিকাঠি : বিশ্বাস *ব্রেন : বিস্ময়করন জৈব কম্পিউটার *দৃষ্টিভঙ্গি : নেপথ্যনায়ক *ধ্যানাবস্থা : প্রথম পদক্ষেপ *শিথিলায়ন : মনের বাড়ি *আত্মবিনাশী প্রোগ্রাম-১ : মনের বিষ *আত্মবিনাশী প্রোগ্রাম-২ : মনের বাঘ *আত্মবিকাশী প্রোগ্রাম-১ : অটোসাজেশন ও প্রত্যয়ন *আত্মবিকাশী প্রোগ্রাম-২ : মনছবি *কল্পনা : মনের চালিকা শক্তি *মনোযোগ : মনের বল *মনে রাখার কৌশল *কোয়ান্টা সংকেত *জাগৃতি ও ঘুম *স্বপ্ন : সৃজনশীল প্রয়োগ *ছাত্র জীবনে সাফল্য লাভ *কোয়ান্টাম নিরাময় *মেদ ভুঁড়ি : ওজন নিয়ন্ত্রণ *ধূমপান ও ড্রাগ বর্জন *সুস্বাস্থ্যের কোয়ান্টাম ভিত্তি *নতুন জীবনের পথে *অতিচেতনার পথে *ডান ও বাম বলয়ের সমন্বয় *প্রকৃতির সাথে একাত্মতা *কমান্ড সেন্টার : কল্যাণ প্রক্রিয়া *অন্তর্গুরু *প্রজ্ঞা *হে অনন্য মানুষ! আপনাকে অভিনন্দন
Motivational
6
আবুল কাসেম ফজলুল হক ১৯৬০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে নিয়মিত লিখে আসছেন। ইতিহাস, দর্শন, সমাজবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, নীতিবিদ্যা, সংস্কৃতি, সাহিত্য ইত্যাদি অবলম্বন করে তিনি চেয়েছেন জীবন ও সমাজের রূপ-স্বরূপের রহস্য উন্মোচন করতে। তাঁর দৃষ্টিভঙ্গি সংশয়াকুল ও সন্ধিৎসু, মুক্ত ও কল্যাণজিজ্ঞাসু, ইতিহাস ও বিজ্ঞানআশ্রিত, বিশ্লেষণমূলক ও বিচারমূলক এবং ভবিষ্যৎমুখী। তাঁর চিন্তার কেন্দ্রবিন্দুতে আছে আবহমান কালের বাঙালি, বাংলাদেশ, বাংলা ভাষা এবং মানবজাতির সভ্যতা ও সংস্কৃতি। তাঁর দৃষ্টির দিগন্ত বিশ্বব্যাপী প্রসারিত। তাঁর গুন্থগুলোর মধ্যে আছে: কালের যাত্রার ধ্বনি, মুক্তিসংগ্রাম, একুশে ফেব্রুয়ারি আন্দোলন, সাহিত্যচিন্তা, উনিশ শতকের মধ্যশ্রেণী ও বাঙলা সাহিত্য, বাংলাদেশের প্রবন্ধ সাহিত্য, যুগসংক্রান্তি ও নীতিজিজ্ঞাসা, মানুষ ও তার পরিবেশ, আশা-আকঙ্খার সমর্থনে, বাংলাদেশের রাজনীতিতে বুদ্ধিজীবীদের ভূমিকা, অবক্ষয় ও উত্তরণ, নবযুগের প্রত্যাশা প্রভৃতি। গত বিছ বছর ধরে বাংলাদেশের নতুন সমাজ ও সংস্কৃতি নির্মাণের লক্ষে তিন সৃজনপ্রয়াসী সাময়িকপত্র লোকায়ত সম্পাদনা করে আসছেন। অনুবাদ করেছেন লিও টলস্টয়, সাঁৎ বভ, বার্টান্ড রাসলে, আলবার্ট আইনস্টাইন, মাও সেতুং, আন্ডুস হাক্সলি প্রমুখের কিছু লেখা। ছাত্রজীবনে তিনি প্রগতিশীল ছাত্র-রাজনীতিতে সক্রিয় ছিলেন। এ গ্রন্থ তিনি বাংলাদেশের তিন দশকের রাজনীতি ও সংস্কৃতির স্বরূপ বিশ্লেষণ করেছেন এবং বিজ্ঞান-প্রযুক্তির উন্নতির সম্ভাবনা ও উপায় সন্ধান করেছেন। বাংলাদেশের ও বর্তমান বিশ্বব্যবস্থার সাম্প্রতিক অনেক জটিল রহস্য তিনি দুঃসাহসের সাথে উন্মোচন করেছেন। বাংলাদেশের জনসধারণের প্রতি তার অন্তহীন আস্থা ও গভীর ভালোবাসার পরিচয় বিধৃত আছে এই বইয়ের প্রতিটি পৃষ্ঠায়।
Political
3
রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_জুন বইয়ের নামম: অন্দরমহল লেখক: সাদাত হোসাইন প্রকাশনী: ভাষাচিত্র ধরন: সমকালীন উপন্যাস মূল্য: ৬৫০ ব্যক্তিগত রেটিং: ★★★★★ সাদাত হোসাইনের লেখার সাথে আমার প্রথম পরিচয় হয়েছিল “মানবজনম” পড়ে। তখনই আমি তার লেখার ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম। বড় পরিসরে অনেক গুলো জীবনের গল্পকে একসূত্রে গেঁথে দেয়ার অনবদ্য শক্তি তার। পুরো বইটা পড়ার সময়ই জীবন নিয়ে এক গভীর ভাবনায় আচ্ছন্ন হয়ে ছিলাম। তার লেখা বাকী বইগুলোও তখনই পড়ার ইচ্ছা জাগে। আর সেই ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটে রকমারি.কম-এ অর্ডার করার মাধ্যমে। যাক খুব অল্প সময়েই অন্দর মহল ও আরশিনগর বই দুইটি হাতে পাই। চলুন তাহলে আস্তে আস্তে অন্দরমহলে ঢোকা যাক। অন্দরমহলে প্রবেশের পূর্বে আরশিনগরেও একটু ঢু মারবো। ‘বইয়ের চেয়ে বড় বন্ধু আর নেই' - কথাটার তাৎপর্য হয়ত অনেকেই উপলব্ধি করেন। অনেকেই এক জীবনে একাধিক বই পড়েন। কিছু বইয়ের কথা চলে যায় বিস্মৃতির অতলে আর কিছু লেখার রেশ মন ধরে রাখে সারাজীবন জুড়ে। হয়ত সেসব লেখা তার মন এফোঁড় ওফোঁড় করে দেয়, হয়ত বা নিজের প্রতিচ্ছবি দেখতে পায় সে লেখায়, হয়ত বা অজানা কোনো রত্নের সন্ধান পায় সেই লেখা থেকে। অথবা সেই লেখা সন্ধান দিয়ে যায় মনের মধ্যে লুকিয়ে থাকা এক অন্দরমহলের। এই অন্দরমহলের খোঁজ কতজন রাখি? বেশিরভাগ মানবজনমই কেটে যায় মনের ভেতর লুকিয়ে থাকা এই অন্দরমহলের খোঁজে। "মানুষ তোর মানস ধন রইল পড়ে, তুই তবু কেন ধন খুঁজিস? সোনা-দানায় কি ধন থাকে, যদি না তুই মন বুঝিস। যে সুখের খোঁজে তুই ধন কাড়িলি, সেই সুখখানি তোর কোথা রয়, মনের মাঝেই সুখের বসত, তবু সেই মনখানা তোর আড়াল রয়। জগত যে এক ভ্রমের নগর, সেই নগরে অন্ধ সকল, ইঁটের ভেতর মহল খোঁজে, আসল তো মন, অন্দরমহল। আমার পড়াশোনা বা জানার জগতটা একটু ভিন্নরকমের। সেই ভিন্নতা থেকেই থ্রিলার থেকে ক্লাসিক সব ধরনেই বই আমাকে টানে। নবীন-প্রবীণ লেখকদের বইয়ের স্বাদ নিতে স্বদা অভ্যস্ত। তেমনই একজন নবীন লেখক সাদাত হোসাইন। নাম টা বেশিদিন আগের শোনা নয়। তবে সে যে বিস্তৃত গল্পে বলে আমাকে কাছে টেনেছে সেটা বলাই এখানে মূখ্য উদ্দেশ্য। রকমারি থেকে বই দুইটা হাতে পাওয়ার পর এক বইপোকা বলেছিল আগে আরশিনগর পড়বেন। তাই আগেভাগে শেষ করেছিলাম 'আরশিনগর'। বেশ ভালো লেগেছিল। লেখক মনের সমস্ত মাধুরী মিশিয়ে তিলে তিলে তৈরি করেছিলেন আরশিকে। আরশি লেখকের মানসপ্রতিমা। অসাধারণ মায়াময়ী। পাঠক অন্য কোনো দিকে না তাকিয়ে আরশির কাজল চোখে 'বিবশ হয়ে চেয়ে' পড়ে ফেলতে পারে উপন্যাসটি। আরশিনগর আসলে এক ভাবালুতার জগৎ। এক অদৃশ্য জাদু বাস্তবতা ছুঁয়ে ছিল উপন্যাসটিকে। কিন্তু তারপরও সেই উপন্যাসের গতি কোথাও কোথাও শ্লথ লেগেছিল। মনে হয়েছিল লেখক -পাঠক দু তরফেই আবেগের ঘনঘটার কিঞ্চিৎ বাহুল্য প্রকাশ পেয়েছে। এরপর শুরু করলাম 'অন্দরমহল'। কিছুদিন ধরে সামন্য কিছু বই রিভিউ করার দৌলতে বুঝেছি স্বতঃস্ফূর্ত রিভিউ নির্ভর করে অবশ্যই লেখকের দক্ষতার উপর, তাঁর লেখনী কতটা এফোঁড় - ওফোঁড় করছে মানব মনকে - তার উপর, মানবমনের অন্দরমহলের কথা কতটা উন্মোচিত হচ্ছে তার লেখনীতে-তার উপর। কিছু কিছু লেখার রিভিউ করার মত ভাষার জোর আমার মত ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র সমালোচককে আল্লাহপাক দেননি। সাদাতের 'অন্দরমহল' এই জাতের লেখা। বইটা পড়ার পর বেশ কিছুক্ষণ স্তব্ধ হয়ে বসেছিলাম। গভীর ভাবনায় ডুবে গিয়েছিলাম। ক্ষণস্থায়ী জীবনের প্রতি মানুষের দুর্নিবার মোহ আর তার পরিণতি নিয়ে চিন্তায় পড়ে গিয়েছিলাম। বইটা পড়া শুরু করার পর চোখের পলকেই পৃষ্ঠার পর পৃষ্ঠা শেষ হয়ে গিয়েছে। যতক্ষণ পড়ছিলাম মনে হচ্ছিল যেন আমি একজন দর্শক হয়ে হারিয়ে গিয়েছি বিষ্ণুপুর গ্রামে, মিশে গেছি অন্দরমহলের চরিত্রগুলোর মাঝে। ক্লাসিক উপন্যাস পড়ার সময় মূলত দু'টি বিষয়ে আমি বেশি গুরুত্ব দেই। এক. বর্ণনা আর দুই. উপন্যাসে চিন্তার গভীরতা। দু'টি উপাদানই উপন্যাসটিতে সঠিকভাবে থাকায় পড়ার সময় কোনো বিরক্তি আসেনি। লেখকের বর্ণনা করার ক্ষমতা সত্যিই অসাধারণ। মনে হচ্ছিল যেন দৃশ্যগুলো চোখের সামনে ভেসে উঠছে। আর উপন্যাসটিতে অন্তর্নিহিত জীবনবোধ নিয়ে আমার কিছু বলার নেই। সাধারণত আমি থ্রিলার বেশি পড়ি। কিন্তু বইটা পড়ার সময় এত গভীরভাবে চিন্তায় ডুবেছিলাম যে অনেক থ্রিলার পড়ার সময়ও এত ভাবতে হয়নি। মাঝখানে কিছু রহস্য অমীমাংসিত থাকায় ভেবেছিলাম সেগুলো হয়ত অমীমাংসিতই থেকে যাবে। তবে শেষ পর্যন্ত বিষয়গুলো পরিষ্কার করে তৃপ্ত করেছেন লেখক। তার এই বিস্তৃত গল্পে একাধিক প্লট, সাবপ্লট, অনেক অনেক চরিত্রের ভিড়, কিন্তু কখনোই উপন্যাসের খেই হারিয়ে যায়নি। বরং প্রতিটি চরিত্র, তা ছোট - বড় যাই হোক, পেয়েছে পূর্ণ মর্যাদা ও পরিণতি। কয়েক পাতা জুড়ে এক-একটি অধ্যায়। অধ্যায়ের শেষ চরিত্রগুলির পরিণতি জানার অদম্য কৌতুহল বাড়িয়ে দেয়। এক একটি চরিত্রের সাথে জড়িয়ে থাকে এক একধরণের জীবনবোধ, তা যেমন কখনো হিংসার, বিদ্বেষের, কখনো অজানা সন্ধানের, কখনো ভালোবাসার, কখনো অচেনা পথের পথিক সেই জীবনবোধ। কে জানে কখন যেন পাঠকও সন্ধান পেয়ে যান নিজেদের অন্দরমহলের। লেখকের সার্থকতা এটাই। এ উপন্যাসের ঘটনাস্থল গঙ্গাবতী নদীর পাড়ে বিষ্ণুপুরে জমিদারবাড়ি গঙ্গামহলের ক্ষমতার অধিকার নিয়ে। বিশদে কিছু বললাম না। আপনারা নিজেরাই এই জমিদারীর অন্দরমহলে প্রবেশ করে খুঁজে নিতে পারেন নিজেদের বুকের ভেতরে থাকা অন্দরমহলকে।
Fiction
0
দুপুরবেলা মায়ের ডাকে নবনীর ঘুম ভাঙ্গে।ঘুম ভাঙ্গার পর সে জানতে পারে আজ তার বিয়ে। হুট করে কেউ যদি জানে আজ তার বিয়ে তাহলে বিচলিত হওয়ার কথা। কিন্তু নবনী হচ্ছেনা। আসলে তার কোনওরকম অনুভূতিই হচ্ছেনা। নবনীর ছোটবোন ইরা, ওর মা বাবা সবাই আজকে বেজায় খুশি। নবনীর জীবনে একটা বিরাট ঘটনা আছে যে কারনে নবনীর বিয়ে হচ্ছিলো না। পাত্রপক্ষ দেখতে এসে পাত্রী পছন্দ করে যায় কিন্তু পরে চিঠি মারফত জানিয়ে দেয় তাদের ছেলে এখন বিয়ে করবেনা। এভাবে অনেকগুলা বিয়েই ভেঙ্গে গেছে। নবনীর বড়মামা খুব গোছানো লোক। এবার তিনি ঢাকার এক পাত্র ঠিক করেছেন। আগে থাকতে কাওকে কিছু জানাননি যাতে লোক জানাজানি না হয়। উনার প্ল্যান ছিল রাতের বেলা এসে বিয়ে পড়িয়ে ভোরে ঢাকার ট্রেনে ওদের তুলে দেয়া। শেষপর্যন্ত খুব জমকালোভাবেই নবনীর বিয়ে হলো। নবনীর বর নোমান সহজ সরল সাধারন মানুষ।তারপরেও নবনীর তাকে ভালো লাগে। বিয়ের পরদিন তারা ঢাকায় চলে এসে একরুমের একটা ছোট্ট বাসায় নিজেদের সংসার শুরু করে। এই উপন্যাসের একটা গুরুত্বপূর্ণ চরিত্র হলো নবনীর ইতিহাসের টিচার। তিনি ছোটবেলায় এতিমখানায় মানুষ হয়েছেন। মাদ্রাসা লাইনে কলেজ পাশ করে স্কলারশিপ নিয়ে ভারতের আলিগড় ইউনিভার্সিটি থেকে এম.এ করেন। অল্প বয়স বলে নবনীরা তাকে ডাকতো চ্যাংড়া হুযুর। তিনি নবনীদের বাড়িতে ভাড়া থাকতেন। প্রথম জীবনে নবনী এই স্যারের প্রেমে পড়ে। স্যারকে চিঠি পাঠায়। স্যার চেষ্টা করেন এড়িয়ে যেতে। একদিন সেই স্যার এসে নবনীর বাবাকে বলে যে সে নবনীকে বিয়ে করতে চায়। নবনীকে তার পছন্দ, এবং সেও তাকে পছন্দ করে। একথা শুনে ওর বাবা খুব ক্ষেপে যায়। স্যার এর জিনিশপত্র রাস্তায় ফেলে দেয়। লোকজন জমে যায়। তারা তাকে মারধোর করে। তখন তিনি নবনী নবনী বলে কাতরাচ্ছিলেন। নেত্রকোনা হাসপাতাল থেকে জবাব দিয়ে দিলে ঢাকা নেয়ার পথে সে মারা যায়। এই ঘটনায় নবনী মানসিকভাবে অপ্রকৃতস্থ হয়ে যায়। বড় মামা তখন তাকে ঢাকায় রেখে চিকিৎসা করায়।যতদিন না সে সুস্থ হয় ততদিন পর্যন্ত কাওকে বাসার ঠিকানাও দেন না পাছে লোক জানাজানি হয়ে যায় নবনী জানতো এটাই তার জীবনের ভয়াবহ ঘটনা। কিন্তু সে কি ঘূর্নাক্ষরেও জানতো যে তার জীবনে এর চেয়েও ভয়াবহ ঘটনা ছিল? উপন্যাসের শেষের দিকে এসে নবনী সেটা জানতে পারে।
Fiction
0
বইটি মোটামুটি ভাল
Political
3
বইটি আমি পড়েছি যদিও বই পড়ার অভ্যাস খুব একটা নেই। কিন্তু যখনি দেখলাম দেশের বড় বড় টেকি সফলদের সফলতার নানা কথা, সফলতার পেছনের গল্প নিয়ে লেখা হয়েছে তখনি আগ্রহের সাথে পড়ি।
Motivational
6
কাহিনী সংক্ষেপঃ বিয়ের অনুষ্ঠানে অনেকদিন পর দেখা হয়ে যায় পুরনো বন্ধুদের, দুই বন্ধু--নৃতাত্ত্বিক মারুফ এবং পত্রিকার ফিচার এডিটর রুমি কথা প্রসঙ্গে জানতে পারে তাদেরই আরেক বন্ধু পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছে ভেন্ট্রিলোকুইজম। কৌতুহলী হয়ে সেটার কারণ অনুসন্ধান করতে গিয়ে ওরা জড়িয়ে পড়ে দারুণ রহস্যময় এক অনুসন্ধানে, বেরিয়ে আসে ভয়ঙ্কর আর শিউরে ওঠার মত সব সত্য, সাধারণ মানুষকে কখনই জানতে দেয়া হয় না এমন সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা আর বহু বছর আগে হারিয়ে যাওয়া এক সম্প্রদায়ের কথা, যার পদে পদে ওদের জন্য ওৎ পেতে আছে মৃত্যু, বিপদ, জড়িয়ে আছে ঘনিষ্ঠ কিছু মানুষের জীবন। “ভেন্ট্রিলোকুইস্ট" শুধু একটি উপন্যাসই নয়, পাঠকদের জন্য ইতিহাস, স্থাপত্য, গণিত, ধর্মতত্ত্ব আর বিজ্ঞানের এক অভূতপূর্ব যাত্রা। ব্যক্তিগত মতামতঃ এই বইটিকে যতই লেখি না কেন, ততই কম। শুরুতেই দুই বন্ধুর এক বিয়ে বাড়ি থেকে বের হয়ে এমন এক জায়গায় যাওয়া যেখানে তাদের ছোটবেলার এক বন্ধুর ভেন্ট্রিলোকুইজম নিয়ে শো রয়েছে। তাঁকে খুঁজতে এসে পরিচয় ঘটে এক রহস্যজনক অধ্যায়ের সাথে; ভেন্ট্রিলোকুইজম। বইটির প্রতিটা পাতায় পাতায় রহস্যের ছোয়া লেগে আছে। লেখক বেশ কিছু বিষয় বইটিতে তুলে ধরেছেন। ভেন্ট্রিলোকুইস্ট নিয়ে চলতে চলতে কাহিনী এমন এক পর্যায়ে নিয়ে গেছেন যেখানে রয়েছে বিজ্ঞান, গণিত এবং ধর্ম সম্পর্কে নানা অজানা তথ্য। - - এছাড়াও বিখ্যাত মেটাল ব্যান্ড “IRON MAIDEN” এর নামের পেছনের তথ্য টা ছিল সত্যিই প্রশংসা করার মত। ডাঃ রুশদি মানুষ হিসেবে এবং ডাক্তার হিসেবে কতটা বিপদজনক হতে পারেন তাঁর বিবরণ দিয়েছেন পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে। ঘাটতি বলে যে কিছু থাকার কথা সেটা বই পড়ার সময় একদমই মনে হয় নি। আমি বরাবরই যেকোন বই পড়ার সময় এর টুইস্ট প্রথমেই বের না করার দলে। আমার কাছে ব্যাপারটা কেমন যেন লাগে। তাতে পড়ার মজা নষ্ট হয়ে যায়। এই বইটা পড়ার ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। লেখক যে বেশ পড়াশুনা করেছেন বইটি নিয়ে তা তাঁর লেখার পরিপক্কতা দেখে বুঝতে পারা যায়। - গণিত বিষয়ে লেখকের “ফিবোনাচ্চি সমীকরণ” টেনে আনা এবং সেটা দিয়েই একটা কোড বের করার পদ্ধতিটা যে বইটিতে ফুটিয়ে তুলেছেন সেটার জন্য ধন্যবাদ প্রাপ্য। - প্রফেশনাল ওয়েতে মার্ডার করার একটি পদ্ধতি তিনি লিখেছেন যেখানে মানুষের শরীরের একটা জায়গায় পিন কিংবা সুচ ফুটালেও মানুষ ইন্সট্যান্ট ডেথ হয়ে যেতে পারে। জায়গার নাম “নেপ অফ দি নেক”। - এছাড়াও পাঠক বইটিতে পাবেন আমেরিকার “পেন্টাগন” এর মতো ডাঃ রুশদির আরেকটি আবিষ্কার “পেন্টাজোন”। যার রয়েছে পাঁচটি দেয়াল এবং ত্রিকোনাকার বেশ কয়েকটি কক্ষ। - এই তো গেল বইটির গুরুত্বপূর্ণ কিছু তথ্য। এর সাথে রয়েছে দুই বন্ধু রুমি এবং মারুফের মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে আসার মতো রোমাঞ্চকর কিছু কাহিনী। প্রতিবার রুশদির বিশাল জগতের কাছে তারা অসহায় হয়ে যায়। রুমির বেশ কিছু উপস্থিত বুদ্ধির কারণে বের হয়ে আসতে পারে ডাঃ রুশদির ভয়ংকর সব ফাঁদ থেকে। রুনু এবং বিনুকে বাঁচানোর নেশায় ছুটতে থাকা দুই বন্ধুর মৃত্যুর কাছাকাছি চলে যাওয়া এবং জয়ন্তপুরে লোকমানের কাছ থেকে নানা অজানা তথ্য। এরই সাথে জয়ন্তপুরে ডাঃ রুশদির কোন সোর্স আছে কী না তা জানতে গিয়ে তাদের আরেক বন্ধু হাসানকে অপ্রত্যাশিতভাবে এক হসপিটালে আবিষ্কার করা। শওকত দ্য ভেন্ট্রিলোকুইস্টের গলার ভয়েসের আরেকটি গড গিফটেড অংশ কী, সেটা জানতে হলে পড়তে হবে বইটি। পাঠক কে পুরোটা সময় রহস্যের জালে মোহাচ্ছন্ন করে রাখবে বইটি, যার স্বাদ নেয়ার জন্য পাঠক বারবার হারিয়ে যেতে চাইবেন অচেনা, অজানা এক ভিন্ন ধারার রোমাঞ্চকর- ভেন্ট্রিলোকুইস্ট এর জগতে।
Thriller
1
আমার বন্ধু রাশেদ বইটি যখন লিখি, তখন আমি আমেরিকায়, দেশে আসব আসব করছি। দীর্ঘদিন থেকে সেই দেশে পড়ে আছি, প্রায় ১৮ বছর, কিন্তু লেখালেখি হয়েছে খুব কম। তার কারণও আছে। আমি এক রকম পাণ্ডুলিপি পাঠাই, অন্য রকম বই হিসেবে বের হয়ে আসে। একবার একটা বই ছাপা হয়ে এল, দেখে আমার আক্কেল গুড়ুম! আমার লেখার পুরো স্টাইল পাল্টে দেওয়া হয়েছে। পড়ে মনে হয় আমি লিখিনি, অন্য কেউ লিখেছে। দেশে প্রকাশককে ফোন করে কারণ জানতে চাইলাম। তিনি লেখালেখির সঠিক পদ্ধতি সম্পর্কে আমাকে জ্ঞান দিয়ে বিশাল একটা চিঠি লিখলেন। অনেক কষ্ট করে পরে আমি অন্য একজন প্রকাশক দিয়ে আমার স্বল্পজ্ঞানের বইটি আমার মতো করে লেখা হিসেবে বের করতে পেরেছিলাম। এর মধ্যে একদিন নিউইয়র্কে শহীদজননী জাহানারা ইমামের সঙ্গে দেখা হলো। তিনি তখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের আন্দোলন করে আমাদের সবার প্রিয় একজন মানুষ। আমি একদিন খুব কুণ্ঠিতভাবে হুমায়ূন আহমেদের ভাই হিসেবে পরিচিত হতে গেলাম। দেখি, তিনি আমার যৎসামান্য লেখা দিয়েই আমাকে আলাদাভাবে চেনেন। শুধু তা-ই না, শহীদজননী আমার লেখালেখি নিয়ে খুব দয়ার্দ্র কিছু কথা বললেন। তখন হঠাৎ করে আমার আবার লেখালেখির জন্য একটা উৎসাহ হলো—এক ধাক্কায় দুই দুইটা বই লিখে ফেললাম। তার একটি হচ্ছে আমার বন্ধু রাশেদ। এটা মুক্তিযুদ্ধের ওপর ভিত্তি করে লেখা একটা কিশোর উপন্যাস। এটা লেখার সময় আমি চেষ্টা করেছি সেই সময়ের ধারাবাহিকতাটুকু রাখতে। মুক্তিযুদ্ধের সময় সাধারণ মানুষ কিসের ভেতর দিয়ে গেছে, সেই ধারণাটাও একটু দিতে চেষ্টা করেছি। এমনিতে আমার কিশোর উপন্যাসের একটা ফর্মুলা আছে, সব সময়ই সেখানে একটা অ্যাডভেঞ্চার থাকে। আর তার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হচ্ছে আমি আমার ছোট ছোট পাঠকের মনে কখনো কোনো কষ্ট দিই না। আমার বন্ধু রাশেদ লেখার সময় আমার মনে হলো, এই বইটি যেহেতু মুক্তিযুদ্ধের ওপর লেখা, তাই যারা এটি পড়বে, তাদের মুক্তিযুদ্ধের সেই সময়ের একটু সত্যিকারের অনুভূতি পাওয়া দরকার। আমাদের মুক্তিযুদ্ধে অচিন্তনীয় বীরত্ব আছে, আকাশছোঁয়া বিজয় আছে, আর সবচেয়ে বেশি আছে স্বজন হারানোর বুকভাঙা কষ্ট। তাই এই বইটাতে আমি খানিকটা কষ্ট ঢুকিয়ে দিয়েছি। এমনভাবে লিখেছি যেন যারা পড়ে, তারা মনে একটু কষ্ট পায়। আমি যেটুকু কষ্ট দিতে চেয়েছিলাম, মনে হয় তার থেকে বেশি দেওয়া হয়ে গেছে, সেটি আমি বুঝেছিলাম আমার ছোট মেয়েটির একটা প্রতিক্রিয়া দেখে। তখন আমি মাত্র দেশে ফিরে এসেছি। ছেলেমেয়ে দুজনেই ছোট তখনো। স্বচ্ছন্দে বাংলা পড়তে পারে না। আমাকে তাই মাঝে মাঝে আমার লেখা বই পড়ে শোনাতে হয়। একদিন আমি তাদের আমার বন্ধু রাশেদ পড়ে শোনালাম। পুরোটা শুনে আমার সাত বছরের মেয়েটি কেমন যেন অন্য রকম হয়ে গেল। চুপচাপ বসে থেকে শূন্য দৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকে। আমরা রাতে ঘুমিয়েছি, সে বিছানায় শুয়ে ঘুমহীন চোখে শুয়ে আছে। গভীর রাতে সে উত্তেজিত গলায় আমাকে ঘুম থেকে ডেকে তুলল। বলল, ‘আব্বু, তুমি একটা জিনিস জানো?’ আমি বললাম, ‘কী?’ সে আমাকে বলল, ‘বইয়ে লেখা আছে রাশেদকে গুলি করে মেরেছে। কিন্তু তার লাশ তো পাওয়া যায়নি!’ আমি ঠিক বুঝতে পারছিলাম না সে কী বলতে চাইছে। কিন্তু তার কথায় সায় দিয়ে বললাম, ‘না, লাশ পাওয়া যায়নি।’ আমার সাত বছরের মেয়ের মুখ আনন্দে ঝলমল করে উঠল। বলল, ‘তার মানে বুঝেছ? আসলে রাশেদের গুলি লাগেনি। সে মারা যায়নি। পানিতে পড়ে সাঁতার দিয়ে চলে গেছে।’ আমি অবাক হয়ে আমার ছোট মেয়েটির মুখের দিকে তাকিয়ে রইলাম। বললাম, ‘হ্যাঁ, তুমি ঠিকই বলেছ। রাশেদের শরীরে গুলি লাগেনি—সে মারা যায়নি। সাঁতরে সে চলে গেছে, সে বেঁচে আছে।’ আমার মেয়ের বুকের ভার নেমে গেল। তার মুখে হাসি ফুটে উঠল। গভীর একটা প্রশান্তি নিয়ে সঙ্গে সঙ্গে ঘুমিয়ে গেল। আমার ছোট মেয়েটির মতো আরও কত শিশুকে না জানি আমি কষ্ট দিয়েছি! সম্ভব হলে সবাইকে বলে আসতাম যে রাশেদ মারা যায়নি। রাশেদরা আসলে কখনো মারা যায় না।
Childrens-Book
2
প্রথমেই লেখককে তার পরিশ্রমের জন্য অনেক শুভ কামনা। কিন্তু যে কথাগুলা না বললেই নয় সেগুলা, বইটিতে সবথেকে বড় সমস্যা যেটি একজন পাঠককে বিরক্তির চরম সীমায় নিয়ে যেতে পারে সেটি হল এখানে বানান ভুলের পরিমাণ অনেক বেশি। এমনকি এই ভুল বানানের জন্য অনেক বাক্যের অর্থ এমন ভাবে পাল্টে গেছে যেটি মূল বক্তব্য থেকে পুরাই আলাদা। এছাড়া আরেকটি বড় সমস্যা বাক্যের ভিতর অবাঞ্ছিত শব্দ। যেগুলা প্রিন্টিং মিস্টেক বলেই আমার মনে হয়েছে। এছাড়া অনেক জায়গায় একই বাক্য বারবার ব্যাবহার করা হয়েছে। বাংলা অনুবাদ পড়ার পর আমি মূল বইটি আবার একবার পড়ি। সেখানে আমি লক্ষ্য করি অনেকগুলা অধ্যায় বাংলায় অনুবাদ করা বইটিতে দেওয়া হয়নি। বইটি পুনঃনিরীক্ষণ করে এবং উপর্যুক্ত কথাগুলা বিবেচনা করে নতুন সংস্করণ প্রকাশ করার জন্য প্রকাশক এবং লেখককে অনুরোধ করছি। আপনাদের চেষ্টা সফল হোক এ কামনাই করি। ধন্যবাদ।
Political
3
#রকমারি_রিভিউ_প্রতিযোগ_এপ্রিল বইয়ের নামঃ বাঘবন্দি মিসির আলি লেখকঃ হুমায়ূন আহমেদ ধরনঃ সমকালীন উপন্যাস প্রকাশনীঃ অন্যান্য প্রকাশনী মূল্যঃ ১৫০ টাকা লেখক পরিচিতিঃ হুমায়ূন আহমেদ (১৩ নভেম্বর, ১৯৪৮ – ১৯ জুলাই, ২০১২) ছিলেন একজন বাংলাদেশী ঔপন্যাসিক, ছোটগল্পকার, নাট্যকার এবং গীতিকার, চিত্রনাট্যকার ও চলচ্চিত্র নির্মাতা। তিনি বিংশ শতাব্দীর জনপ্রিয় বাঙালি কথাসাহিত্যিকদের মধ্যে অন্যতম। তাঁকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা পরবর্তী অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক বলে গণ্য করা হয়। বাংলা কথাসাহিত্যে তিনি সংলাপপ্রধান নতুন শৈলীর জনক। অন্য দিকে তিনি আধুনিক বাংলা বৈজ্ঞানিক কল্পকহিনীর পথিকৃৎ। নাটক ও চলচ্চিত্র পরিচালক হিসাবেও তিনি সমাদৃত। তাঁর প্রকাশিত গ্রন্থের সংখ্যা তিন শতাধিক। তাঁর বেশ কিছু গ্রন্থ পৃথিবীর নানা ভাষায় অনূদিত হয়েছে, বেশ কিছু গ্রন্থ স্কুল-কলেজ বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যসূচীর অন্তর্ভুক্ত। বই আলোচনাঃ লুনাকে সামলে রাখার দায়িত্ব পড়েছে ফতের ওপর। প্রতি মাসে এক-দুদিন ফতেকে এই দায়িত্ব পালন করতে হয়। কারণ প্রতি মাসে এই এক-দুদিন তসলিমা খানম যাত্রাবাড়ীতে তার বোনকে দেখতে যান। বোনের ক্যানসার হয়েছে। বাঁচার কোনো আশা ডাক্তাররা দিচ্ছেন না, আবার দ্রুত মরে গিয়ে অন্যদের ঝামেলাও কমাচ্ছে না? তসলিমার অনুপস্থিতিতে ফতে লুনার দিকে লক্ষ রাখে। তাকে বলা আছে একটা সেকেন্ডের জন্যেও যেন মেয়েকে চোখের আড়াল না করে। ফতে তা করে না। সে লুনার আশপাশেই থাকে। লুনা এমনই লক্ষ্মীমেয়ে যে কোনো কান্নাকাটি করে না। খাবার সময় হলে শান্ত হয়ে ভাত খায়। সে শুধু রাতে কাঁদে। মেয়েটির আঁধারভীতি আছে।লুনা বারান্দায় বসে আপনমনে খেলছে। হাতের মুঠি বন্ধ করছে, খুলছে। খুব ক্লান্তিকর খেলা কিন্তু ফতের দেখতে ভালো লাগছে। মিসির আলির দিন শুরু হয়েছে রুটিন মতোই। সকালে ঘুম ভাঙতেই দেখেছেনমশারির ভেতর দিয়ে খবরের কাগজটা ঢুকিয়ে দেওয়া। একসময় বাসিমুখে খবরের কাগজ পড়তে তিনি আনন্দ পেতেন, এখন পান না, কিন্তু অভ্যাসটা রয়ে গেছে। অভ্যাস সহজে যায় না। খবরের কাগজ পড়তে পড়তেই ইয়াসিন চা নিয়ে আসে। মশারির ভেতরে ঢুকিয়ে গলা খাকারি দেয়। সেই চা, চা-না অতিরিক্ত চিনির কারণে সিরাপ জাতীয় ঘন তরল পদার্থ। ইয়াসিনকে অনেক বলেও চিনি কমানোর ব্যবস্থা মিসির আলি করতে পারেন নি। এখন মিসির আলির গরম সিরাপ খাওয়া অভ্যাস হয়ে গেছে। প্রায়ই তাকে বলতে শোনা যায়-ইয়াসিন আরেক চামচ চিনি দে। ইংরেজি প্রবচনটা এতই সঠিক-Old habit die hard. পুরোনো অভ্যাস সহজে মরে না। মিসির আলির হাতে খবরের কাগজ। তিনি খবরের কাগজে চোখ বুলাচ্ছেন—হঠাৎ এমন কোনো খবর চোখে পড়ে কি না যা মনে গেঁথে যায়। এমন কিছু চোখে পড়ছে না। হত্যা, ধর্ষণ ছাড়া তেমন কিছু নেই। মিসির আলির মনে হল সব পত্রিকার উচিত এই দুটি বিষয়ে আলাদা পাতা করা। খেলার পাতা, সাহিত্য পাতার মতো ধর্ষণ পাতা, হত্যা পাতা। যারা ঐ সব বিষয় পড়তে ভালবাসে তারা ঐ পাতাগুলি পড়বে। যারা পড়তে চায় না তারা পাতা আলাদা করে রাখবে। বিশেষ দিনে হত্যা এবং ধর্ষণ বিষয়ে সচিত্র ক্রোড়পত্র বের হবে। পাঠ্য প্রতিক্রিয়াঃ মিসির আলি, বাংলাদেশের প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় রহস্যময় চরিত্র। মিসির আলি কাহিনীগুলো রহস্যমাত্রিক। মিসির আলির কাহিনীগ‌ুলো ঠিক গোয়েন্দা কাহিনী নয়, কিংবা 'ক্রাইম ফিকশন' বা 'থ্রিলার'-এর মতো খুনি-পুলিশের ধাওয়া-পাল্টা-ধাওয়া নয়, বরং মনস্তাত্ত্বিক, বিজ্ঞাননির্ভর এবং প্রচন্ড যুক্তিনির্ভর কাহিনীর বুনটে বাঁধা। বরং অনেক ক্ষেত্রে একে রহস্যগল্প বলা চলে। চারিত্রিক দিক দিয়ে মিসির আলি চরিত্রটি হুমায়ূন আহমেদের আরেক অনবদ্য সৃষ্টি হিমু চরিত্রটির পুরোপুরি বিপরীত। তরুণ হিমু চলে প্রতি-যুক্তির তাড়নায়, অপরপক্ষে বয়োজ্যেষ্ঠ মিসির আলি অনুসরণ করেন বিশ‌ুদ্ধ যুক্তি। এই যুক্তিই মিসির আলিকে রহস্যময় জগতের প্রকৃত স্বরূপ উদঘাটনে সাহায্য করে। সেসব কাহিনীর প্রতিফলন ঘটেছে মিসির আলি সম্পর্কিত প্রতিটি উপন্যাসে। তাই প্রতিটি গল্প অসাধারণ এক কথায়।
Fiction
0
#রবিজ_রকমারি_বুক_রিভিউ_কন্টেস্ট বই : তোমাদের জন্য ভালোবাসা লেখক : হুমায়ূন আহমেদ প্রকাশকাল : ১৯৭২ প্রকাশন : অন্বেষা (২০০৯) পৃষ্ঠা সংখ্যা : ৭০ প্রচ্ছদ : ধ্রুব এষ মূল্য : ১৩৫৳ আমার রেটিং : ৩.৫ / ৫ কাহিনী সংক্ষেপ: " বিজ্ঞান সবসময়ই কিছু পরিমাণে নিষ্ঠুর " বিজ্ঞানী মাথুর কোনো এক অজ্ঞাত ব্যক্তির লেখা বই পড়ছেন সেখানেই পেলেন এই উক্তি। এমন এক মুহূর্তে বইটি পড়ছেন যখন পৃথিবী এক মহা সংকটের মুখোমুখি । সৌরজগতের গ্রহ গুলো সব উধাও হয়ে যাওয়া শুরু করল । কোনো বিস্ফোরণ , বিচ্ছুরণ কিছুই না । হুট করেই গায়েব হয়ে যাচ্ছে । সিডিসি জানালো এক বছর পরে পৃথিবীও এভাবে মিলিয়ে যাবে । কেন হচ্ছে এমন ? তিনি খুঁজছেন পৃথিবীকে রক্ষা করার উপায়। লী নামের একটি মেয়ে তাকে পাঁচ হাজার বছর পূর্বের এই বই দিয়ে গেছে । মেয়েটি দাবি করছে বইটিতে ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে । মধ্য বয়সী এক ব্যক্তি সেই বইতে লিখেছেন তার অতি অসাধারন কিছু অভিজ্ঞতার কথা । লেখকের সেই অভিজ্ঞতার কথা , যখন কোনো এক নিঃসঙ্গ সন্ধ্যায় ত্রিমাত্রিক এই পৃথিবী ছেড়ে পাড়ি জমিয়েছিলেন চতুর্মাত্রিক জগতে । তাও আবার অনিচ্ছা , বিস্ময় , ভয় নিয়ে , স্বপ্নের ঘোরে , হঠাৎ করে । সেইসকল মানুষরুপী চতুর্মাত্রিক প্রাণীদের মাঝে , যারা সময় নিয়ন্ত্রণ করতে জানে । যারা বিজ্ঞানের সকল বিষয় উদঘাটন করেছে । যাদের কাছে বস্তু , সময় ,কাল বলে কিছুই নেই । তারা জানতো পাঁচ হাজার বছর পর এক ব্যক্তির আগমন ঘটবে পৃথিবীতে যে আবিষ্কার করে ফেলবে চতুর্মাত্রিক জগতের সমীকরণ রহস্য । খামখেয়ালি সেই ব্যক্তিটির নাম 'ফিহা' । তা কি করে হয় ? সব থেকে বুদ্ধিমান প্রাণী তো টাইফা গ্রহের মানুষেরা । সবুজাভ টাইফা গ্রহের মানুষেরা তাই পৃথিবীকে চতুর্মাত্রিক করার জন্য তৈরি করে এক মহা সংকট । এই মহা সংকট যেন কেউ থামাতে না পারে তাই তারা সেই অজ্ঞাত লেখক কে দিয়েছে এক কঠিন কাজ , কাজটি লেখকের স্বজাতির বিরুদ্ধে । যদি সে কাজটি না করে তাহলে সে কখনোই তার পরিবারের কাছে ফিরে যেতে পারবে না । কি ছিলো সেই কাজ ? লেখক কি তার স্বজাতির বিরুদ্ধে যাবে ? নাকি পরিবারের আবেগে পৃথিবী থেকে মুখ ফিরিয়ে নিবে ? পৃথিবী কি টিকে থাকবে ? মতামত: ব্যক্তিগত মতামত থেকেই বলছি । আমি আরো কিছু তথ্য আশা করি বইটা থেকে । কারন পড়ার পর আমার মনে কিছু প্রশ্ন উদয় হয়েছে যেগুলোর উত্তর বইয়ে দেয়া নাই । বিজ্ঞানের নানা বিষয় লেখক একটি বইতে ছোটখাট আকারে প্রকাশ করছেন । চতুর্মাত্রিক জীবের তৈরি মানুষ , মিউটেশন , মহাকাশ , আবেগ সবকিছু আপনি এই এক বইয়েই পাবেন । হুমায়ূন আহমেদ বইয়ে অন্তর্ভুক্ত করেছেন টাইম ট্রাভেলের প্যারাডক্স , চতুর্মাত্রিক জগৎ নিয়ে কিছু কথা । বর্তমানে এই বিষয়গুলো মোটামুটি সবাই জানে , ১৯৭২ সালের দিক থেকে বিবেচনা করলে , তখন কজনই বা প্যারাডক্স সম্পর্কে জানত ? উনি গ্রান্ডফাদার (তবে বইয়ে ফাদার প্যারাডক্স আছে) প্যারাডক্স টি বইয়ে লিখে বলেছেন যে মানুষ টাইম ট্রাভেল করতে পারবে না । কারন , আপনি যদি টাইম মেশিনে করে আপনার বাবার ছোটবেলার সময়ে যান আর তাকে খুন করেন তাহলে আপনার বাবার ভবিষ্যতে বেঁচে থাকার কথা না । সেই হিসাবে আপনারও বেঁচে থাকার কথা না । কিন্তু আপনি বেঁচে আছেন । যদি টাইম ট্রাভেল সম্ভব হত তাহলে কিন্তু আপনি আপনার বাবাকে খুন করে বেঁচে থাকতেন না । অথচ টাইফা গ্রহের মানুষ টাইম ট্রাভেল করতে পারে । কেন পারে , কিভাবে পারে ? সেই ব্যাখ্যা নাই । এমনকি তাদের কাছে সময় , বস্তু বলেও কিছুই নাই । যেহেতু বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী তাই কোনো একটা ব্যাখ্যা দিয়ে দিতে পারতেন । বাংলাদেশের প্রথম দিকের সাইন্স ফিকশন হিসেবে মোটেও খারাপ না । বরং নতুন অধ্যায় শুরু হয়েছিলো এর মাধ্যমে । প্রথমে সাইন্স ফিকশনটি ধারাবাহিক ভাবে পত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছিলো । ওনার অন্যান্য লেখার মত এটাও সাবলীল । তবে উনি মিসির আলি বা অন্য লেখার সময় যেমনভাবে আবেগ প্রকাশ করতেন বা উপস্থাপন করতেন এখানে সেভাবে পাই নি । লেখকের শুরুর দিকের লেখা বলেই হয়ত এমন । চরিত্রের কথা বলতে গেলে ওনার উপন্যাসে মূল চরিত্র যেমনটা হয় ঠিক তেমনি । খামখেয়ালি , প্রকৃতি প্রেমী , অন্যদের ভিন্ন । এখানেও ফিহার ক্ষেত্রে সেরকম একটা বৈশিষ্ট খুঁজে পাবেন । রিভিউ লিখতে গিয়ে আবিস্কার করেছি , কয়েক ভাবে এর রিভিউ লেখা যায় । কারন , ছোট হলেও অত্যন্ত ঘটনাবহুল একটা ফিকশন লিখেছেন । তাই বইটি সুখপাঠ্য । !!!SPOILER ALERT!!! টাইফা গ্রহের মানুষরা যেহেতু ভবিষ্যৎ দেখতে পারে এবং অবস্থান করতে পারে । তার মানে তারা সেই ভবিষ্যৎ কে দেখে কোনো ফলাফলও পরিবর্তন করতে পারবে । বইয়ের ভেতরে যে লেখকটি ছিলো তাকে বলা হয়েছিলো পৃথিবীতে গিয়ে ফিহাকে খুন করতে । কারন টাইফা গ্রহের মানুষ পৃথিবীতে যেতে পারে না । ফিহাকে খুন করা হলেও সে এর পূর্বেই সমীকরণ আবিষ্কার করে পৃথিবীকে রক্ষা করে । টাইফা গ্রহের মানুষরা কি জানতো না যে তারা ব্যর্থ হবে ? জানার পরও কেন তারা খুন করার চেষ্টা করলো ? ফিহা যে সমীকরণ আবিষ্কার করবে তারা জানে বলেই তো তাকে হত্যার চেষ্টা করেছে । এর থেকে আমি ধারণা করছি , হুমায়ূন আহমেদ ভবিষ্যতকে অপরিবর্তনীয় বলে ধরে নিয়েছেন । !!!END OF SPOILER!!! সব মিলিয়ে চমৎকার একটি বই । আশা করি পড়তে গিয়ে নিরাশ হবেন না । এক ঘন্টার মধ্যেই বইটি শেষ করা সম্ভব । যদি শব্দ নিয়ে কোনো ঝামেলায় পরেন সেক্ষেত্রে বইয়ের শেষে নির্ঘন্ট রয়েছে । ওখানে অনেক কিওয়ার্ড বর্ননা করা আছে । সব শেষে বলব বই পড়ুন বই নিয়ে বাঁচুন । - Fahim Montasir Misbah
Science-Fiction
4
জীবন চলার পথে দুটি জিনিস বড় নাড়া দেয়। বন্ধু আর মা বাবা। গল্পটা সেই ছেলের যার সব ছিল। ছিল ভরপুর পরিবার, বন্ধু। একদিন সব পর হলো। শরতের কটুতিক্ত আকাশে ভাঙা গলায় ডাকা কাকের মতোই জীবনের খন্ড খন্ড আশা, সুখ, বেদনা আর অমিয় স্নেহের গল্প। চলুন নেমে পড়ি চুপচাপ। #কাহিনী_অল্প_টানি কিছু বুঝে ওঠার আগেই যেন সব ভেঙে খানখান হয়ে গেল। বাবার মৃত্যুর পর মা তাকে টানছে না। বরং একটা হিংস্রাত্মক আক্রমনে বিষিয়ে দিল মন। বাবার মৃত্যুর জন্য তাকে দায়ী করছে? তপু! ছেললেটা কি তার বাবাকে ভালোবাসত না? ঘটনাটা নিছক এক্সিডেন্ট ছিল। আর তারপরই শুরু হলো অকথ্য অত্যাচার। মাররধর। এভাবে বাঁচা যায়? কিন্তু সে বেঁচে রইল। তার গোলগাল চেহারাতে শত দাগ। চেহারা চুল জামা সব উদ্ভট, সবার মতে সে বখে গেছে। বস্তুত সামাজিক অন্তর্দৃষ্টি খুব তীক্ষ্ণ যে না তা তো জানা কথা। কিন্তু এসবের মাঝে স্কুলে সে পড়ত। একদিন একটা মজার মেয়ের সাথে তার পরিচয় হলো। মেয়েটা বেশ পাগলাটে। রাজাকার স্যারের মুখের ওপর কথা বলে আবার প্রিন্সিপাল ম্যাডামের সাথে কি গুছিয়েই না কথা বলে! তারপর ক্ষ্যাপাটে মেয়েটা পড়ে যায় তপুর পেছনে। তপুর ও ভালো লাগতে থাকে বন্ধুহীর জীবনের আবার বন্ধুত্বের ছোঁয়া। ওদিকে প্রিয়াঙ্কা মেয়েটা ঝক্কি দিয়ে ওঠে। জেনে যায় তপুর সব! তারপর? ঠিক কি হয়? হঠাৎ কেনই বা সেদিনের বখে যাওয়া বলে রটে যাওয়া ছেলেটা স্কুলের মধ্যমনি হয়ে ওঠল? নিছক কাকতালীয়? ওদিকে মায়ের ব্যাপরটা কি হলো? আগের মতোই না বদলে গেল? গল্পটা বন্ধুতের, গল্পটা মায়ের, গল্পটা প্রিয়াঙ্কার, গল্পটা একান্তই তপুর আর তাদের যারা তাকে তপু বানিয়েছে। #প্রতিক্রিয়া জাফর ইকবালের কিশোর উপন্যাস হিসেবে বেশ বিখ্যাত একটা বই "আমি তপু" যদিও বইটার গল্পেন প্লটটা ইংরেজি মুভি "the boy called it" থেকে কপি করার অভিযোগও আছে। সে যাই হোক, বইটার সাহিত্যমাণ বেশ ভালো। তাছাড়া ছোট ছোট ঘটনা গল্পটাকে আলাদা মাত্রা দিয়েছে। মুক্তিযোদ্ধা ভাইকে মেরে ফেলার পর বোনটা গিয়ে জাতীয় সঙ্গীত গাইতে থাকে । বর্ণনার ভাষা অনবদ্য। চরিত্র নির্মাণে খুব দক্ষতার পরিচয় দিয়েছেন লেখক। সবগুলো চরিত্র স্বতন্ত্র গুণে গুণাম্বিত। অতিরঞ্জিত ঘটনা তেমন নেই। বাস্তবতা আর লেখনী দুই মিলে বানিয়েছে আমাদের তপুটাকে। প্রিয়াঙ্কা মেয়েটা একটা অসম্ভব বড় মাপের ব্যক্তিত্বসম্পন্ন। গল্পের দ্বিতীয় গুরুত্ববাহী চরিত্র এটি। তার মতো করে ভাবতে পারাটা আসলে আমাদের সবার উচিত। এবার আসি বইটার কিছু নেগেটিভ দিকে। প্রথমত জাফর ইকবালে কিশোর উপন্যাসের প্যাটার্ন প্রায় এক রকম। এটাও তার ভিন্ন কিছু না। তাছাড়া কিছু জায়গাতে উনি গল্পটা টেনেছেন অযথা। যদিও সেটা অগ্রাহ্য করা যায়। তপু ছেলেটার চরিত্রে যেই দ্বৈততা দেখাতে চেয়েছেন লেখক তা আরেকটু রয়ে সয়ে দেখানো যেত। বাঙলা সাহিত্য জগতে লেখকদের সবচেয়ে কমফোর্ট জোন হলো প্রথম পুরুষে লেখা। বইটাও তেমনি। এধরনের লেখা পড়তে সবারই ভালো লাগে। আর এই গল্পে অনেকটা আবেগ দিয়ে চরিত্রগুলো নির্মান করা হয়েছে। সেগুলো সবার মন ছোঁয়ে যাবে অবশ্যই। আর একটু আধটু কান্না যদিও করেন তাতে কিছু এসে যায় না। কান্নায় আবেগ বাড়ে, চরিত্রগুলোকে ভালোবাসা যায়
Childrens-Book
2
আমি কঠিন হৃদয়ের মানুষ । সচরাচর তেমন কাদি না । বলা ভালো একটু চেপে রাখি । কারণ কান্না মানুষ কে দুর্বল করে দেয় । আমি দুর্বল হতে চাই না । আর সাহসীরা সহজে কাদে না । তারা বুকে চেপে রাখে । কঠিনতম সময়ে যাতে নিজেকে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে । সবাই এটাই বলে আমার মায়াদয়া কম । তখন হাসি পায়, মনে মনে এক চোট হেসে নেই । কত সহজ একজন মানুষ কে বিচার করা । তার বাইরের রুপ দেখে ভিতর টাও জেনে ফেলা । কিন্তু সত্যি বলতে, অনেক অনেক চাপা কষ্ট জমা রয়েছে । আর সেগুলো নিয়েই হাসি মুখে আমার মানবজনম । এই বইটা আমার তিন রাত না ঘুমানোর ফসল । তিন রাত না ঘুমিয়ে এই বইটা পড়েছি । কত অদ্ভুত মানুষের জীবন । যে যার স্থান থেকে চিন্তা করে । আমরা সবাই স্বার্থপর পর । হ্যা কেউ জীবনের জন্য, কেউ জীবিকার জন্য আবার কেউ হিংস্রতার চরম নেশার জন্য । ভালো আর মন্দের দ্বন্দে সবাই ভাগে হয়ে যায় । কেউ কেউ নিজেকে চিনতে পুরো জীবন পার করেরে দেয় আবার কেউ আপন মানুষ চিনতে ও ভুল করে । সব ই আসলে এক চক্রের মধ্যে আবব্ধ । যেই চক্রের নাম মানবজনম । আমাদের জন্ম হয় কোন উদ্দেশ্য তা আমরা আগে থেকে জানতে পারি না । কিন্তু জন্মের পর থেকে শুরু হয় আমাদের উদ্দেশ্য বা লক্ষ্যের খোজ । হয়ত এই খোজ চলতে থাকে আমৃত্যু আবার মৃত্যুর আগেই কেউ পেয়ে যায় সব কিছু । মানুষ আসলে তার নিজেকে চিনতে সময় নেয় । তার চিন্তা চেতনা আর ভাবনা গুলো বিকাশ করার মত সুযোগ খোজে সব সময় । কিন্তু কারো কারো খোজ চলতেই থাকে, যেন তা শেষ হবার নয় । প্রতিটি মানুষ ই ভালবাসা চায় । চায় একটু যত্ন,আদর, নিরাপত্তা । যেখানে সে নিজের মত করে থাকে বা থাকতে পারে । যার কাছে তার কোন সংকোচ নেই, নেই কোন ভয় । যার হাতে সে নির্ভয় এ হাত রাখতে পারে । যাকে চোখ বন্ধ করেই বিশ্বাস করা যায় । কিন্তু অনেক সময় ভুল জায়গায়, ভুল মানুষ কে বেছে নেয় অনেকেই । সম্পর্ক আসলে মায়া । শুধু মানুষ ই এই মায়াতে থাকে বা তাদের এই অনুভূতি আছে । অন্য প্রাণির নেই । তাই তারা মানুষ নয় । কিন্তু এই সম্পর্ক যেমন বাবা মা, ভাই বোন,স্বামী স্ত্রী সব আছে কিন্তু তারপর ও অনেক কিছুই নেই । বুকে হাত রেখে যদি বলতে পারেন আমি আমার এই সম্পর্কে খুশি আছি তবে সেটাই সার্থক । কিন্তু প্রতিটি মানুষ ই সম্পর্কের কোন না কোন জায়গায় অখুশি । কেউ তার সেই জায়গাতে খুশি না । তবুও মানবজনম......
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃ রাশা লেখকঃ মুহম্মদ জাফর ইকবাল। ধরনঃশিশু কিশোর উপন্যাস প্রচ্ছদ শিল্পীঃ ধ্রুব এষ প্রকাশকঃ তাম্রলিপি মূল্যঃ২৭০ টাকা  বইটির মূল চরিত্র রাশা নামের অষ্টম শ্রেণী পড়ুয়া একটি মেয়ে। অসম্ভব রকমের মেধাবী এই মেয়েটির আসল নাম ছিল রাইসা। রাইসার বয়স যখন দশ তখন তার ক্লাসের একটা ফাজিল ছেলে তাকে নিয়ে একটা কবিতা লিখে।কবিতাটির শুরু এভাবেঃ রাইসা মাছের কাঁটা খায় বাইছা বাইছা। ক্লাসের কোন ছেলেমেয়ে এই কবি বা কবিতায় পাত্তা দেয়নি।কিন্ত রাইসা তবুও কান্নাকাটি করল।বাসায় এসে সে ঘোষনা করল সে এই নাম আর রাখবে না।রাইসা অনেক চিন্তা করে নিজের জন্য নাম ঠিক করে। রাইসার 'ই'বাদ দিয়ে সে তার নাম দিল রাশা।প্রথম প্রথম সবাই ঠাট্রা করলেও রাইসা হাল ছাড়ল না। তিন বছর পর তার বয়স যখন তেরো তখন সত্যি তার নাম হল রাশা।রাইসা যখন রাশাতে পাল্টে গেল তখন সে আবিষ্কার করল নামের সাথে তার চারপাশের পৃথিবীটাও পাল্টে গেছে। তার আব্বু আম্মু প্রায়ই ঝগড়া করত । । একসময় তার আব্বু আম্মুর মধ্যে বিচ্ছেদ হয়ে যায়। এরপর তারা দুজনেই আরেকটি বিয়ে করে বিদেশে চলে যায়। এই অবস্থায় রাশার মাথায় যেন আকাশ ভেঙ্গে পড়ে। অবশেষে তার ঠাঁই হয় গ্রামের বাড়িতে তার পাগলী নানির কাছে।  এই নানীর কাছে রাশা শুরু করে জীবনের নতুন অধ্যায়। জন্মাবধি শহরে বড় হওয়া মেয়ে রাশা প্রাকৃতিক সান্নিধ্যে নিজেকে নতুনভাবে চিনতে শুরু করে।প্রথম দিকে গ্রামের পরিবেশের সাথে মানিয়ে নিতে সমস্যা হলেও রাশা একসময় খাপ খাইয়ে নেয়।  নিজের প্রচেষ্টায় সে গ্রামের স্কুলে ভর্তি হয়। স্কুলে ভর্তি হবার পর সে জানতে পারে যে স্কুলটির নাম একজন রাজাকার এর নামে"আহাদ আলী স্কুল"।তখনই রাশা ঠিক করে এই নাম সে নিজের মুখে কখন ও বলবে না। আর সে এ ও বলে যে একদিন সে এই স্কুলের নাম পাল্টে দিবি কিভাবে??  সেইটা নাহয় পড়েই জানবেন। তার কিছু বন্ধুও তৈরি হয় গ্রামে- জয়নব, মতি, জিতু, আর বন্ধুসম মুক্তিযোদ্ধা সালাম নানা। গ্রামে এসে সে অনেক কিছু শিখে যা আগে তার কল্পনার বাইরে ছিল। #সাতার_কাটতে_পারে। #নৌকা_বাইতে_পারে #গাছে_উঠতে_পারে এমনকি #একটু_একটু_রান্না_করতে পারি #সায়েন্স_অলিম্পিয়াড নামে একটা প্রতিযোগিতা অংশ নেয় রাশা।সেখানে তাকে স্কুলের বাম লিখতে বলা হলে সে লিখ না।সে জানায় তাদের স্কুলটা একজন রাজাকার এর নামে তাই সে এর নাম কোনদিন লিখবে না। আর সে জন্যই স্কুল পড়ুয়া রাশা কলেজের ছাত্রছাত্রীদের চাইতে বেশি নম্বর পেয়েও বিজয়ী হতে পারেনি। রাশা নামে এই ছোট মেয়েটিকে নিয়ে সেখানে হৈচৈ পরে যায় বিভিন্ন চ্যানেল এর সাংবাদিকরা তার সাথে কথা বলেন। রাশার এই সব কাজে ক্ষিপ্ত হয় রাজাকার আহাদ আলী।সে রাশা কে তুলে নিয়ে যায় মারার জন্য। রাশা কি তার বুদ্ধিমত্তা দিয়ে নিজেকে বাঁচাতে পারবে? এই রাজাকার এর হাত থেকে নাকি তার মুক্তিযোদ্ধা নানার মতো থাকে ও প্রাণ হারাতে হবে? জেনে নিতে পড়ে ফেলুন সুন্দর এই বইখানা। #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ  বিজ্ঞানমনস্ক এই গুনী লেখকের অসামান্য একটি উপহার এই কিশোর সাহিত্যখানা।  জাফর স্যরের কিশোর উপন্যাসগুলো আমাদের স্বপ্ন দেখতে শেখায়। এ উপন্যাসটিও অনেকটা সেরকম। নতুন পরিবেশ এসে নিজেকে মানিয়ে নিয়ে নতুন করে জীবন শুরু করা রাশাকে অসম্ভব ভাল লাগেছে।চমৎকার একটা বই। পড়ে দেখতে পারেন আশা করি ভাল লাগবে আপনাদেরও। হাপি রিডিং....
Childrens-Book
2
জাহিদ হোসেনের থ্রিলার উপন্যাস “ঈশ্বরের মুখোশ” পড়লাম।গল্পটা শুরুতেই অনেক ভারী, অন্তত আমার তাই-ই মনে হয়েছে। একগাদা দৃশ্যপট পরিবর্তন, একাধিক চরিত্রের অবতারনা অধ্যায়ব্যাপী, অত্যাধিক ঐতিহাসিক রেফারেন্স, ইত্যাদির ভারে আমার মাথা জ্যাম হয়ে গিয়েছিলো। প্রথম তিন বসাতে মাত্র ৬০-৭০ পাতার মতো এগুতে পেরেছিলাম। কিন্তু তারপরেই হয়ে গেল ম্যাজিক, দৌড়ে চললাম রুদ্ধশ্বাস। সত্যিকথা বলতে, একবার ভেবেছিলাম বইটাই পড়বোনা, কিন্তু না পড়লে ভুল করতাম। কারণ এই বইয়ের মারপ্যাঁচ এবং সমাপ্তির চমক, গল্পের গতিশীলতা গত কয়েকবছরের মধ্যে পড়া মূলধারার রহস্যউপন্যাস গুলোর মধ্যে অন্যতম সেরা, এবং একদম প্রথম সারির।লেখকের বর্ণনাশৈলীতে গতিশীলতা লক্ষণীয় কিন্তু কিছু জিনিশ না বললেই নয়। বইটা পড়লেই বোঝা যাবে লেখকের শব্দসম্ভার যথেষ্টই উন্নত এবং ইতিহাস সম্পর্কিত জানাও যথেষ্টই, কিন্তু বইটির ঘটনাবিন্যাসে এলোমেলোভাবে লক্ষণীয়। যার কিছু ঐচ্ছিক, আর কিছু অযাচিত (সম্ভবত) । ঘটনা বর্ণিত হয়েছে দুই আঙ্গিকে, একটি আঙ্গিকে গল্প বলেছে প্রফেসর হোমস এর সহকারী, আর অন্যটায় তৃতীয় পক্ষ থেকে ঘটনা বর্ণনা করা হয়েছে। গল্প দুটো থেকে চারটি কালে বিস্তৃত, যার অন্তত দুটো কাল গল্পের বেশ কিছু অংশ ধরে প্যারালাল চলে। যেখানে ফুটে ওঠে পূর্বে বাংলা রিপারকে ধরার ঘটনাটি এবং বর্তমানের চলমান ঘটনার তদন্ত। কিন্তু অতীতের তদন্তে দেখা গেছে সেখানে প্রফেসরের সহকারী অপু উপস্থিত থাকলেও তার কণ্ঠে ঘটনা বর্ণিত হয়নি। আমার মনে হয়েছে পুরো ঘটনাই থার্ড পারসনে লেখা যেত। যাই হোক সেসব অবশ্য কোনও বিশেষ বড় সমস্যা না। উপেক্ষা করাই যায়। তবে গল্পের বেশিরভাগ চরিত্র এমনকি মূল চরিত্রও কথোপকথনের জন্য ইনফরমাল ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করে, বিষয়টা আরও একটু কমানো গেলে ভালো লাগতো। যদিও এটাই আজকাল দেশীয় ট্রেণ্ড, নাটক-সিনেমা গুলোতেও এটাই চলছে, মূল বাংলা ভাষার থেকে সরে এসে আমরা লোকাল ল্যাঙ্গুয়েজে কথা বলছি! গল্পটি এগিয়েছে মূলধারার রহস্য উপন্যাসের মতো। যেখানে গোয়েন্দা ঘুরে ঘুরে সূত্র খুঁজে বের করার চেষ্টা করে, মানুষের সাথে কথা বলে, জেরা করে, এবং অনুসিদ্ধান্তে আসতে চেষ্টা করে। তাছাড়া পাঠককেও যথেষ্ট সুযোগ দেওয়া হয়েছে তদন্তের সাথে নিজের মতামত ভেবে সিদ্ধান্তে আসার। কারণ দুজন গোয়েন্দার কেউ-ই পুরোদস্তুর প্রফেশনাল নন, তারা দুজনেই বৃদ্ধ, এবং প্রফেসর আর ওটাই তাদের প্রধান কাজ। গোয়েন্দাগিরি নয়। আর এখানেই আর দশটা রহস্য উপন্যাস থেকে এই বইটা আলাদা, এটাকে আমি বইটার শক্তি হিসাবে দেখেছি। পাঠক এই রকম মৌলিক থ্রিলার পাওয়া আসলেই কঠিন।তাই মিস না করে পড়ে ফেলেন।আপনাদের অনুভুতি প্রকাশের আশায় রইলাম।
Thriller
1
“বুবুনের বাবা” স্যার জাফর ইকবালের রচিত অসাধারন একটি কিশোর উপন্যাস।অ্যাডভেঞ্চারে ভরপুর এই উপন্যাসটি পড়ে মনে হয়েছে যেন আমি নিজেই এই বইটির মধ্যে আছি।স্যার মুহাম্মদ জাফর ইকবাল অনেক সুন্দর ভাবে বইটির কাহিনী বিন্যাস করেছেন।বইটির প্রধান চরিত্রের নাম হল বুবুন যার বাব অনেকদিন আগে অপ্রকৃতিস্থ অবস্থায় হারিয়ে গিয়েছিলেন।তার মা একজন চাকরিজীবী,হঠাত তার মায়ের পোস্টিং পরিবর্তন হয়ে একতি মফস্বল এলাকায় পরে।নতুন জায়গায় নিজেকে খাপ খায়িয়ে নিতে অনেক কষ্টকরতে হয়। সেখানে বুবুনের নতুন কিছু বন্ধু হয়।কিন্তু কাহিনীর মোড় পাল্টে যায় বুবুনের বাবা ফিরে আশাতে।বুবুনের বাবার আচরন বাচ্চা ছেলেদের মত হয়ে গেছে।ডাক্তার দেখানো হলে বলা হয় বুবুনের বাবা হঠাত করেই কোন ঘটনার কারনে সুস্থ হয়ে যেতে পারেন।বুবুন ও তার বন্ধুরা মিলে তার বাবকে সুস্থ করতে নানা রকম চেষ্টা করতে থাকে।প্রতিবারই তারা বিফলে যান। এদিকে বুবুনের মা গ্রামে মেয়েদের শিক্ষার উপর জোর দিলে গ্রামের কিছু খারাপ লোক যারা মুক্তিযুদ্দের সময় রাজাকার ছিল তাদের রোষানলে পড়েন।তারা বুবুনের মাকে অনেক ভাবে ভয় দেখাতে থাকে।অবশেষে তারা বুবুনকে কিডন্যাপ করেন।বুবুনের বন্ধুরা মিলে বুবুনকে বাচাতে রাজাকারদের আস্তানায় যায় সাথে বুবুনের বাবাও।অবশেষে নান নাটকীয়তার সৃষ্টি করে উপন্যাসটি শেষ হয়।বলতে গেলে অনেক সুন্দর লেগেছে পড়তে বইটি।কিশোরদের জন্য আনন্দের খোরাক হতে পারে বইটি।পাঠকরা স্যারের বই যারা পড়তে ভালবাসেন তারা অবশ্যই মিস করবেন না।
Childrens-Book
2
'দুর্গেশনন্দিনী' বাংলা সাহিত্যের এক পরম বিস্ময়ের নাম। বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম সার্থক উপন্যাস এটি। এই উপন্যাসের রচনাকাল ১৮৬২-৬৩। এই উপন্যাস রচনার সময় বঙ্কিমচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের বয়স ছিল চব্বিশ থেকে ছাব্বিশ বছর। শেষোক্ত তথ্যটা কি অবাক করার মত নয়? বাংলা সাহিত্যে উপন্যাসের বয়স আজ প্রায় ১৫০ বছর হতে চলল কিন্তু এখনো অনেক সাহিত্যিককে নিজের জীবনের সেরা লেখাটা লিখতে আজীবন মাথাকুটে মরতে হয়। সেখানে মাত্র চব্বিশ বছর বয়সী এক যুবক কি করে এত চমৎকার একটা উপন্যাস লিখে ফেললেন যা কিনা শুধু বাংলা ভাষার প্রথম সার্থক উপন্যাসই নয় বরং আজো বিবেচিত হয় বাংলা ভাষায় রচিত অন্যতম সেরা উপন্যাস হিসেবে, তা ভাবতে গিয়ে শুধু গলদঘর্মই হতে হয়। সত্যিই, বঙ্কিমচন্দ্র আসলেই একজন জিনিয়াস! 'দুর্গেশনন্দিনী' উপন্যাসের পটভূমি ষোড়শ শতাব্দীর শেষভাগে উড়িষ্যার অধিকারকে কেন্দ্র করে মুঘল ও পাঠানের সংঘর্ষ। তারমানে যে উপন্যাসটি বাংলা সাহিত্যে ইতিহাস সৃষ্টি করেছিল, সেটিরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হয়েছিল ইতিহাসেরই উর্বর জমিনে! দিল্লীশ্বরের সেনাপতি মানসিংহের পুত্র জগৎসিংহ মাত্র ৫ হাজার সৈন্য নিয়ে বাঙলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলে গিয়ে চোরাগোপ্তা হামলা চালাচ্ছিল পাঠানদের ওপর। এক পর্যায়ে মান্দারণ যাত্রাকালে ঝড়ের কবলে পড়ে এক মন্দিরে আশ্রয় নেয় সে। সেখানেই সে দেখা পায় দুই রমণীর, একজন যুবতি আর একজন সদ্য যৌবনা তরুণী। তরুণীর প্রেমে পড়ে যায় জগৎসিংহ। কিন্তু সেবারে তরুণী ও তার সখির পরিচয় জানতে ব্যর্থ হয় জগৎসিংহ। পরেরবার তরুণীর সেই সখি বিমলার কাছ থেকে সে জানতে পারে সেই তরুণী ছিল মান্দারণের দুর্গাধিপতি বীরেন্দ্র সিংহের কন্যা তিলোত্তমা। বিমলার সাথে জগৎসিংহ চলে তিলোত্তমার সাথে দেখা করতে। কিন্তু জগৎসিংহ সেখানে থাকাকালীনই, পাঠানরা দখল করে বীরেন্দ্রসিংহের দুর্গ। সকলের সাথে জগৎসিংহও বন্দি হয়। বন্দি অবস্থায় পাঠান সেনাপতি কতলু খাঁ'র কন্যা আয়েষা প্রেমে পড়ে জগৎসিংহের। তারপর কি হবে? জগৎসিংহ কি মুক্ত হতে পারবে? বিমলা, তিলোত্তমা, বীরেন্দ্রসিংহেরই বা কি হবে? আর শেষ পর্যন্ত জগৎসিংহের হৃদয় জয় করবে কে? আর বিজিতের কি পরিণতি হবে? এমন নাটকীয়ভাবেই আবর্তিত হয়েছে 'দুর্গেশনন্দিনী' উপন্যাসের কাহিনী। 'দুর্গেশনন্দিনী' পাঠের অভিজ্ঞতা আসলে ভাষায় প্রকাশ করার মত নয়। বঙ্কিমচন্দ্রের লেখার ভাষা যেমন বেশ কঠিন, তেমনি লেখার ভাবও অনেক কঠিন। তাই তাঁর লেখা পড়তে আক্ষরিক অর্থে দাঁত ভাঙার জোগাড় না হলেও, বাংলা ভাষায় যাদের বেশ ভালো দখল আছে তাদেরও কখনো কখনো একটু হলেও হোঁচট খেতে হয়। কিন্তু তারপরও বঙ্কিমচন্দ্রের লেখায় কেমন যেন একটা কাব্যময়তা আছে যা পাঠকের মনে মাদকতার সৃষ্টি করতে বাধ্য। তাই একবার বঙ্কিমচন্দ্রের লেখা পড়তে শুরু করলে যত কষ্টই হোক, শেষ না করে ওঠা অসম্ভব। পাশাপাশি 'দুর্গেশনন্দিনী' উপন্যাসের কাহিনীও এতই আকর্ষনীয় ও চির তরুণ যে, খুব সহজেই এই উপন্যাস পড়তে পড়তে ধরতে পারা যায় সেই ষোড়শ শতাব্দীর সময়কার আবহকে। আর বেশি কথা খরচ করব না এই উপন্যাস নিয়ে। কিন্তু একটা কথা না স্বীকার করে উপায় নেই যে লেখক উপন্যাসের প্রায় প্রতিটি চরিত্রকেই সমান মমতার সাথে নির্মাণ করেছেন তাই একটা পর্যায়ে এসে আমার কাছে প্রতিটি চরিত্রকেই অনেক বেশি আপন বলে মনে হয়েছে। তবে ব্যক্তিগতভাবে আমাকে জগৎসিংহ আর তিলোত্তমা অপেক্ষা বিমলা আর আয়েষা চরিত্র দুটি অধিক আকৃষ্ট করেছে। ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে যারা স্রেফ একটা প্রেমকাহিনীর চেয়েও অনেক বেশি কিছু পেতে চান, তারা অবশ্যই 'দুর্গেশনন্দিনী' উপন্যাসটি পড়ে দেখবেন।
Fiction
0
Ami banglali-der bolchi, Ai boi poro ... Nijer jat chino.
Political
3
অসাধারণ উপন্যাস! এখানে একদিকে যেমন আছে সমাজের উচ্চবর্গের প্রভাবশালীর আধিপত্য, নিম্নবর্গের অন্যায় সহনশীলতা তেমনি রয়েছে সুশিক্ষিত ব্যাক্তির প্রতিবাদ ও সাহসিকতা। বেণী ও গাঙুলী মহাশয়গণ সমাজে যে তাদের অপকর্মের জাল ছড়িয়ে রেখেছেন তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করার সাহস নেই গ্রামের কোনো মানুষের। তবে একজনের সামনে বেণী তার সীমা অতিক্রম করতে পারে না। সে হলো একই গ্রামের রমা। অত্যন্ত সহনশীলতাসম্পন্ন বিচক্ষণ একজন নারী। অপরদিকে সামন্তবাদের নির্মম অন্ধকার, শোষণ, বঞ্চনার হাত থেকে গ্রামের নিরীহ মানুষকে রক্ষা করতে এগিয়ে আসে শহরের শিক্ষিত যুবক রমেশ। রমেশের মহান হৃদয় দোলা দেয় রমার মনকে। কিন্তু সমাজপতির নির্মমতা টিকতে দেয় নি রমেশকে। শেষে কি পরিণতি হবে রমেশ ও রমার এবং তাদের কুসংস্কারাচ্ছন্ন সমাজে?
Fiction
0
জীবিত কিংবা লেখা থামিয়ে দেননি এমন কোন লেখকের বই আলোচনা করতে গেলে, বইটির পাশে লেখক স্বয়ং দাঁড়িয়ে থাকেন। বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় যতটা না বইটার আলোচনা হয় তার চেয়ে লেখক নিয়েই আলোচনা বেশী হয়। ‘ গ্যাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ তাঁর স্বভাবমতন এ উপন্যাসেও কুহকি বাস্তবতায় পাঠককে মোহিত করে রেখেছেন; ইলিয়াস তাঁর রাগী দৃষ্টিতে নিম্নবিত্তের শোষিত-পীড়িত জীবনের আখ্যান তুলে ধরেছেন; শীর্ষেন্দুর এ উপন্যাসটিতেও উঠে এসেছে লেখকের আধ্যাত্মিকতার বোধ’ – এ ধরণের মন্তব্য, বই আলোচনায়, আমাদের দৃষ্টি বইটি থেকে সরিয়ে দিয়ে লেখকের বৈশিষ্ট্যের দিকেই নিয়ে যায়, ফলত আলোচ্য বইটি অনেকটা গুরুত্ব হারায়। এমন নয়, গ্রন্থালোচনায় লেখকের বৈশিষ্ট্য চিহ্নিত করা অপরাধ; যেকোন বইয়ের স্বার্থকতা নিরুপনে সে গ্রন্থে লেখকের স্বকীয় বৈশিষ্ট্য কতটুকু তা অবশ্যই একটা জরুরী মানদন্ড। একজন নবীন লেখকের উপন্যাসটি যদি ‘ পথের পাঁচালী’ উপন্যাসের সমমানের হয় তবে তিনি আমাদের প্রশংসা পাবেন কিন্তু তাঁর উপন্যাসটির বৈশিষ্ট্য যদি বিভূতিভূষণের তবে সেটা আর আলোচনারই যোগ্য থাকে না। প্রশ্ন হচ্ছে লেখকের বৈশিষ্ট্য আলোচনা কি সবসময়ই জরুরী? আমি বলবো, না। একজন তরুণ লেখকের লেখায় তার স্বকীয় বৈশিষ্ট্য বা ট্রেডমার্ক লক্ষ্য করা গেলে সমালোচকের দায় থাকে পাঠকের সামনে সেটি তুলে ধরা, কিন্তু যে লেখকের সহজাত বৈশিষ্ট্যগুলো ইতোমধ্যে তার পূর্বের গ্রন্থসমূহে উঠে এসেছে, তাঁর নতুন বইয়ে লেখক যদি সেসব দিক থেকে সরে এসে অন্য কোন ধরণে মুখ না ফেরান সে লেখকের বৈশিষ্ট্য নিয়ে আলোচনা বাহুল্য মাত্র। হুমায়ূন আহমেদ একজন অতিপ্রজ এবং অতি-পঠিত লেখক। তাঁর এই অতিপ্রজতা ও তাঁর বইয়ের অতি-পঠন হুমায়ূন আহমেদের যেকোন বই আলোচনায় প্রভাব ফেলে এসেছে। সমালোচকেরা সবসময়ই ব্যস্ত থেকেছেন এই বইয়েও আমাদের পরিচিত লেখকের কোন কোন দিক উঠে এসেছে। ফলে তাঁর অসংখ্য বই-ই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ এর রিভিউ পড়ে আমরা আগ্রহ হারাই, ভাবি নতুন কিছু আর নেই এতে, সমালোচক তো ঘুরিয়ে ফিরিয়ে বললেনই ‘সবই পরিচিত হুমায়ূন আহমেদীয়’ লেখা। হুমায়ূন আহমেদের মৃত্যুর পর প্রত্যাশা মতই হুট করে তাঁর স্তাবকের সংখ্যা বেড়ে গেলো প্রচুর। কোন আলোচনা ছাড়াই একদল (যাদের অনেককেই কখনো হুমায়ূন আহমেদ নিয়ে মুখ খুলতে দেখিনি) হুমায়ূন আহমেদ-কে বানিয়ে দিচ্ছেন বাংলা ভাষার শ্রেষ্ঠ কথাসাহিত্যিক, একদল বানাচ্ছেন পৃথিবীর! আন্দালিব রাশদি এক লেখায় পুশকিনের উদ্ধৃতি দিয়ে এদের সম্বন্ধে বললেন, ‘they can only love the dead’। যাই হোক, এত স্তাবকতাতেও ক্ষতি হচ্ছে ঐ হুমায়ূন আহমেদের বইয়েরই। ভাবলাম, হুমায়ূন আহমেদ নেই, তিনি আরও ভালো কোন লেখা আমাদের দিবেন সে প্রত্যাশাও আর করতে পারবো না তাঁর কোন লেখা পড়ার সময়; তাঁকে বুঝতে হলে পুরোনো বইগুলোর কাছেই যেতে হবে। আরও একবার পড়ে ফেললাম তাই ‘জোছনা ও জননীর গল্প’। এ উপন্যাসের কাহিনি সংক্ষেপে বলা কঠিন; অসংখ্য চরিত্রের, অসংখ্য ঘটনা এসে মিলেছে এতে। তবু মোটামুটি সংক্ষেপে বলে নেই একবার। দিনক্ষণ উল্লেখ না থাকলেও বোঝা যায় কাহিনি শুরু হয়েছে একাত্তরের মার্চ মাসের শুরুর দিকে। নীলগঞ্জ হাই স্কুলের এসিস্ট্যান্ট হেডমাস্টার ইরতাজউদ্দিনের, ঢাকায় তার ভাই শাহেদের বাসায় আসার বর্ণনা দিয়ে উপন্যাসের শুরু। শাহেদ ঢাকায় চাকরি করে, তার স্ত্রী আসমানী, মেয়ে রুনি, বন্ধু নইমুল আর গৌরাঙ্গ। যুদ্ধ শুরুর আগে ঢাকা শহরের থমথমে পরিবেশে তাদের দৈনন্দিন জীবন চলতে থাকে। উপন্যাসের মুক্তিযুদ্ধের কথা আসবার আগেই আমরা আরও পরিচয় পেয়ে যাই পুলিশ অফিসার মোবারক সাহেব ও তার পরিবারের, কবি কলিমউল্লাহর। বইয়ের একশত সাঁইত্রিশ পৃষ্ঠায় পঁচিশে মার্চের কালরাত্তিরের বর্ণনার মাধ্যমে আমরা প্রবেশ করি আমাদের মহান মুক্তিযুদ্ধের পটভূমিতে। পঁচিশে মার্চ রাতের বর্ণনাতেই আমরা দেখি রাজনীতি বিচ্ছিন্ন সাধারণ মানুষগুলোর জীবনে কীভাবে রাজনীতির আঁচ নেমে এসেছিল। শাহেদ হারিয়ে ফেলে তার স্ত্রী আসমানী ও মেয়ে রুনিকে; মিলিটারিরা হত্যা করে গৌরাঙ্গের মেয়ে রুনুকে, ধরে নিয়ে যায় তার স্ত্রী নীলিমাকেও; খুন হয়ে যান মোবারক হোসেন। ছাব্বিশে মার্চ সকাল থেকে চরিত্রগুলোর জীবন শুধুমাত্র ব্যক্তিগত থাকে না, হিংস্র রাজনীতির কালো থাবার নিচে ঢাকা পড়ে। ঐ ভয়াল এক রাত্রির উম্মত্ততায় বিপর্যস্ত মানুষগুলোর নিজেকে ফিরে পাওয়ারই গল্প বাকী উপন্যাসজুড়ে। শাহেদ নয় মাস ধরে খুঁজতে থাকে তার হারিয়ে যাওয়া স্ত্রী-মেয়েকে; ঘটনাচক্রে ইরতাজউদ্দিন হন শান্তি কমিটির চেয়ারম্যান, আবার তিনি জালেমের শাসনে জুমার নামাজ পড়াতে অস্বীকার করে শহীদ হন; কলিমউল্লাহ গোলাম কলন্দর নাম নিয়ে হয়ে ওঠে রাজনৈতিক কবি, মোবারক সাহেবের মেঝ মেয়েকে বিয়ে করে সে; গৌরাঙ্গ উম্মাদ হয়ে পড়ে; যাকে আমরা সাতই মার্চের ভাষনের দিনও দেশ সম্বন্ধে নির্বিকার দেখেছিলাম, সেই নইমুল যুদ্ধে চলে যায়। রচিত হতে থাকে ব্যক্তিক ও রাজনৈতিক জীবনের একীভুত এক গাঁথা, মহান মুক্তিযুদ্ধের নয় মাসের সংগ্রাম। ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ ইতিহাস আশ্রিত উপন্যাস। মুক্তিযুদ্ধের অসংখ্য ঘটনা এ উপন্যাসে এসেছে, এসেছে আমাদের মুক্তিযুদ্ধের অনেক কিংবদন্তীর কথা। সেই সাথে এইসব ঘটনা, ঐতিহাসিক চরিত্র কীভাবে প্রভাবিত করেছে, উদ্বেলিত করেছে, উজ্জীবিত করেছে সাধারণ মানুষকে, বদলে দিয়েছে এই ভূখন্ডের সাতকোটি মানুষের জীবন তাও এসেছে গভীরভাবেই। উপন্যাসটি তাই ইতিহাসের চাপে ঢাকা পড়ে নি বরং হয়ে উঠেছে ঐতিহাসিক এক ঘটনায় বদলে যাওয়া মানুষের আখ্যান। মনুষ্য-সৃষ্ট এক তান্ডবে কতগুলো কাছকাছি থাকা মানুষের বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া আর অচেনা-অজানা কিছু মানুষের কাছে চলে আসার গল্পই ‘জোছনা ও জননী’। এত সব ঘটনা, চরিত্র আর ইতিহাস নিয়ে লেখা নিয়ে লেখা হলেও ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ এর গল্প বলায় এক আশ্চর্য এক ধারাবাহিকতা আছে- যদিও খুব ব্যতিক্রমি ভঙ্গিতে। চারশ তিরানব্বই পৃষ্ঠার বিশালাকায় এই বইটিতে গল্প বলার ধারাবাহিকতায় কোথাও এতটুকু ছেদ পড়েনি। প্রায় জয়েসীয় গল্প বলার ঘরাণায় ঔপন্যাসিক গল্পে নিয়ে এসেছেন- স্মৃতি-কথন, চিঠি, স্বপ্নদৃশ্য, ভাষণ/বক্তৃতা, খবরের কাগজের কাটিং, মুক্তিযুদ্ধের দলিল। অবিশ্বাস্য দক্ষতায় ঢুকিয়ে দিয়েছেন গফুর আর মজনুর কাহিনি, যেটা নিজেই হতে পারতো চমৎকার এক ছোট গল্প। করেছেন এমন আরো অনেক নিরীক্ষা, এর সবগুলোই সফল হয়েছে বলা যাবে না। ঔপন্যাসিক একজন বল-জাগলারের মতন তাঁর হাতের সমস্ত বল হাওয়ায় ছুঁড়ে মেরেছেন, যার সব কয়টি হয়তো হাতে এসে পৌঁছেনি। মনে রাখতে হবে, খেয়ালী শিল্পী কখনই পুরোপুরি পরিচ্ছন্ন হন না; গল্পের শক্ত গাঁথুনি দেখতে কেই বা কাফকা পড়তে যায়? ‘জোছনা ও জননীর গল্প’ নামের যে সাহসী উপন্যাসটি হুমায়ূন আহমেদ লিখেছেন- সেটিকে আরও নিঁখুত গাঁথুনি দিতে গেলে হয়তো এর অনেকটা প্রাণ-ই হারিয়ে যেত। কোন গ্রন্থই অবশ্য-পাঠ্য নয়। ‘যুদ্ধ ও শান্তি’ না পড়েও কাটানো যায় চমৎকার ঝামেলাহীন এক জীবন। ‘জোছনা ও জননীর গল্প’, এমনকী বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধ সম্পর্কে জানতে আগ্রহীরাও না পড়লেও চলবে। এ নিয়ে কম বই তো আর নেই! তবে একজন খেয়ালী শিল্পীর দৃষ্টিতে মুক্তিযুদ্ধকে দেখতে, অনুভব করতে চাইলে পাঠক হয়তো এই উপন্যাসটির কাছে বারবার ফিরে আসবেন। আর হ্যাঁ, উপন্যাসের নতুন ফর্মের জন্য দিবা-রাত্রি জেগে কা্টানো তরুণ লেখকেরা, এটি আপনাদের জন্য একটি অবশ্য-পাঠ্য বই!
War
5
‘টলস্টয়ের কিশোর গল্প’ বিশ্ববিখ্যাত লেখক লিও টলস্টয় এর লেখা শিশু কিশোর উপযোগী একটি বই । বইটি তে তার লেখা কয়েকটি সেরা শিশু কিশোর গল্প একত্রে প্রকাশ করা হয়েছে । লিও টলস্টয়ের পুরা নাম নিকলায়েভিচ টলস্টয় , তিনি ১৮২৮ সালের ২৮শে আগস্ট জন্মগ্রহন করেন । তিনি একজন খ্যাতিমান রুশ লেখক। তাকে রুশ সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ লেখক, এমনকি বিশ্ব সাহিত্যের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ঔপন্যাসিক হিসেবেও বিবেচনা করা হয়। তার দুইটি অনবদ্য উপন্যাস যুদ্ধ ও শান্তি (ইংরেজি War and Peace) এবং আন্না কারেনিনা যা পৃথিবীর ইতিহাসের অন্যতম জনপ্রিয় দুইটি বই । তল্‌স্তোয়-এর জন্ম তুলা প্রদেশের ইয়াস্নায়া পলিয়ানা নামক জায়গায়। তিনি উপন্যাস ছাড়াও নাটক,ছোট গল্প এবং প্রবন্ধ রচনায় ব্যাপক খ্যাতি অর্জন করেন। তিনি নিউমোনিয়াতে আক্রান্ত হয়ে মারা যান। ১৯১০ সালের ২০ নভেম্বররাশিয়ার আস্তাপোভো নামক এক প্রত্যন্ত স্থানের রেলওয়ে স্টেশনে তিনি অসুস্থ হয়ে পড়েন এবং পরে মারা যান। তার মৃত্যুর পর ১৯২৮-১৯৫৮ এর মধ্যবর্তী সময়ে তার সাহিত্যকর্ম ৯০ খণ্ডে বিভক্ত হয়ে তৎকালীন সোভিয়েত ইউনিয়ন এ প্রকাশিত হয় । তার গল্পসমুহ নিয়ে টলস্টয়ের কিশোর গল্প বইটি প্রকাশিত হয় ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে । বইটি অনুবাদ করেছেন এনায়েত রাসুল , যা চমৎকার ভাবে তিনি করেছেন । বইটি প্রকাশিত হয় হাবিব প্রকাশনী থেকে এবং বইটির প্রচ্ছদ ও অলংকরন করেছেন নুপুর আক্তার । লিও টলস্টয়ের জীবন ও অন্যরকম , তিনি জমিদার পরিবারে জন্মগ্রহন করা সত্বের বিলাসিতা বাদ দিয়ে বেছে নিয়েছিলেন গ্রামের জীবন , কৃষকের জীবন। তিনি অসংখ্য কিশোর গল্প ও উপন্যাস লিখেছেন তার জীবনে , এর থেকে বেছে দশটি সেরা গল্প নিয়ে রচিত হয়েছে এই বইটি যা পড়লে পাঠকেরা টলস্টয়ের লখা সম্পর্কে জানতে পারবেন এবং পাশাপাশি অসাধারন কিছু গল্পের স্বাদ পাবেন ।
Childrens-Book
2
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর সম্পর্কে নতুন করে বলার মতো আসলে কিছু নেই। কারণ বাংলা সাহিত্যের সমস্তটা জুড়েই রবি ঠাকুরের বসবাস। বাংলা সাহিত্যে এমন কোন অংশ নেই যেখানো রবি ঠাকুর নেই। প্রতিটা অংশেই আছে তার অবদান। এসব কথা প্রতিটা বাঙালিরই জানা। যাই হোক, সেই রবীন্দ্রনাথের সংসার জীবন যখন শুরু হয় তখন তিনি বাইশ বছরের যুবক। বাইশ বছর বয়সে যশোরের ফুলতলি গ্রামের নয় বছরের মেয়ে ভবতারিণীকে বিয়ে করেন। সেই ভবতারিণীই আমাদের মৃণালিনী। বিয়ের রাতে রবি ঠাকুর তার স্ত্রী ভবতারিণীর নাম বদলে মৃণালিনী রাখেন। "মৃণালিনী অর্থ পদ্ম আর রবি মানে সূর্য। ভোরবেলাকার সূর্যের আলো পদ্মের উপর পড়লে পদ্ম পূর্ণভাবে বিকশিত হয়। রবি ছাড়া মৃণালিনী যেমন অপ্রস্ফুটিত থাকে তেমনি মৃণালিনীবিহীন রবিও অপূর্ণ"। মাত্র নয় বছরে মৃণালিনী এ বাড়ির বউ হয়ে আসেন। সেই ছোট্ট বালিকাটিকে ভবতারিণী থেকে রবি ঠাকুরের মৃণালিনী করার দায়িত্ব নেন রবীন্দ্রনাথের মেজো বৌদি জ্ঞানদা দেবী। পড়াশোনা শিখানো থেকে শুরু করে শাড়ি পড়া শিখানো- সবকিছু ঘষে মেজে তৈরী করে দেন জ্ঞানদা বৌদি। নয় বছরের বালিকাটির তিনি হয়ে উঠেন একজন অভিভাবক। একটা সময় এই মৃণালিনীই হয়ে যান বাড়ির দায়িত্বপ্রাপ্ত একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি। দীর্ঘ এই সংসার জীবনে পাওয়া না পাওয়া, পূর্ণ অপূর্ণ সমস্ত কথা লিখে রেখে গেছেন মৃণালিনী। শুধু তার নিজের কথাই না জ্ঞানদা বৌদিসহ অনেকের কথাই লিখে গেছেন। এমনকি কাদম্বরী দেবীর কথাও তিনি বাদ দেন নি। এই লেখায় যেমন তুলে ধরেছেন তিনি ঠাকুর বাড়ির আধুনিকতা তেমনি কুসংস্কারাচ্ছন্ন দিকটি তুলে ধরতেও দ্বিধা করেন নি। মৃণালিনীর সেই আত্মকথন নিয়েই লেখা "আমি মৃণালিনী নই"।
Fiction
0
#রকমারি_বইপোকা_রিভিউ_প্রতিযোগিতা বইয়ের নামঃঅন্যভুবন লেখকঃহুমায়ূন আহমেদ প্রকাশনীঃঅনন্যা প্রকাশন ধরনঃসমকানীন উপন্যাস মূল্যঃ১০০ টাকা( রকমারি মূল্যঃ৭৫ টাকা) . এই উপন্যাসটা মিসির আলিকে নিয়ে।বরকতউল্লাহ নামের একজন উনার সাথে দেখা করতে আসে তার কিশোরী বয়সের একটা মেয়ের সমস্যার ব্যাপারে সাহায্য চাইতে।যে কিনা একটু আদ্ভুত টাইপের এবং যার কিছু আস্বাভাবিক ক্ষমতা আছে।মেয়েটির নাম তিন্নী থাকে বাবার সাথে বিশাল এক বাড়িতে। ছোট বেলায় মা মারা গেলেও বাবা সে অভাবটা বুঝতে দেয় নি তাকে। ছোটবেলা থেকেই তিন্নী বড় হয়েছে বাবার আদরে। তাই হয়ত তার চরিত্রের অস্বাভাবিক ব্যাপারগুলো ধরা পড়ে নি কারো চোখে। . কিন্তু একটু বড় হওয়ার পরই তার মাঝে বেড়ে উঠা অস্বাভাবিকতাটুকু স্পষ্টভাবে ফুটে উঠে। বয়স মাত্র নয় বছর হলেও অস্বাভাবিক গম্ভীর হয়ে থাকে সে। বিশাল বাড়ির এককোনায় ছোট্ট একটা রুমেই সারাদিন কাটিয়ে দেয় সে। তার বাবা ছাড়া বাড়ির কেউই ডাক সা পড়লে যায় না সেদিকে। সবাই প্রচন্ড ভয় পায় তিন্নীকে। কারন সে ইচ্ছা করলেই যেকারো মস্তিষ্কে ভয়ঙ্কর যন্ত্রনা দিতে পারে। সেটা অসহ্য একটা ব্যাপার। যারা এই যন্ত্রনা ভোগ করেছে কেবল তারাই বুঝতে পারে এর ভয়াবহতা। . এছাড়াও মাঝে মধ্যে সারাদিন সে রোদের মধ্যে বসে থাকে। সকাল থেকে সন্ধা পর্যন্ত পাথরের মত বসে থাকে। নড়েনা একচুলও। সারাদিন খাওয়া দাওয়া বন্ধ রাখে সে। সূর্য থেকেই নাকি খাবার পায় ঐদিনটায়। তারপর সূর্য ডুবে গেলেই নিজের ঘরে ফিরে এসে ছবি আকতে শুরু করে তিন্নী। অন্ধকারে বসেই ছবি আকে সে। সেটাও সাধারন কোন ছবি না। প্যাচানো লতার মত সবুজ আর হলুদ রঙয়ের এক ধরনের গাছের ছবি। . মাঝেমাঝে সে ঘুমের মধ্যে গাছগুলোর সাথে কথা বলে সে। গাছেরা নাকি তিন্নীকে নিজেদের দেশে নিয়ে যেতে চায়। ইদানিং বাগানের কিছু কিছু গাছের কথা বুঝতে পারে সে। সারাদিন তাদের কথা শুনে তিন্নী। . তিন্নীর বাবা শেষপর্যন্ত তিন্নীর সমস্যাটা নিয়ে আসে মিসির অালীর কাছে। মিসির আলী দিনরাত মাথা ঘামিয়েও কোন সুষ্ঠু ব্যাখ্যা খুজে পান না এই ব্যাপারটার। তবে কি এটা আরেকটা অমিমাংসিত রহস্য হিসেবে বাধা পড়ে যাবে মিসির আলীর অমিমাংসিত রহস্যের খাতায়? নাকি মিসির আলী সমাধান করতে পারবেন কঠোর এই সমস্যার? জানতে চাইলে পড়ে ফেলুন মিসির অালী সিরিজের অসাধারন এই বইটি। আরেকটা চমক অপেক্ষা করছে আপনাদের জন্য অন্যভূবন বইটাতে। চমকটা মিসির আলীর ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে।সেটা নাহয় পড়ার পরই জানবেন। . #পাঠ_প্রতিক্রিয়াঃ মিসির আলি , বাংলাদেশের প্রখ্যাত ঔপন্যাসিক হুমায়ূন আহমেদ সৃষ্ট একটি জনপ্রিয় চরিত্র। মিসির আলী কাহিনীগুলো রহস্যমাত্রিক। মিসির আলির কাহিনীগুলো ঠিক গোয়েন্দা কাহিনী নয়, কিংবা ক্রাইম ফিকশন,বা থ্রিলার,-এর মতো খুনি-পুলিশের ধাওয়া- পাল্টা-ধাওয়া নয়, কিংবা বরং মনস্তাত্ত্বিক, বিজ্ঞাননির্ভর এবং প্রচন্ড যুক্তিনির্ভর কাহিনীর বুনটে বাঁধা।এখানে ও তিনি যুক্তিনির্ভর হয়ে সমস্যার সমাধান করতে চেয়েছিলেন কিন্ত কেমন করে যেন তিনি মিসির আলীর মত বাস্তব যুক্তিবাদী মানুষ, সম্পুর্ণভাবে পরাবাস্তবতার জগতে ঢুকে যায় এ উপন্যাসে।চমৎকার একটি বই।পড়ে দেখুন আশা করি ভাল লাগবে। হাপি রিডিং....
Fiction
0
যে রক্তসাগর পেরিয়ে বাংলার বুকে স্বাধীনতা এসেছিল তাতে লাখো শহীদের রক্তের সাথে মিশে আছে ছোটছোট কিশোর মুক্তিযোদ্ধার রক্তকণা। কিন্তু তাদের কথা কেউ বলেনি! তাদের কেউ স্মরণ রাখেনি! কোন বইয়ে তাদের বীরত্বগাথা ফুটে ওঠেনি। এটা বড়ই দুঃখের বিষয়। শ্রদ্ধেয় জাফর ইকবাল স্যার লিখলেন তাদের নিয়ে। যাদের কেউ মনে করেনি! নিঃসন্দেহে "আমার বন্ধু রাশেদ" আমার এবং এদেশের সকল কিশোরের সর্বপ্রিয় উপন্যাস। সময়টা ১৯৭১ সাল। নতুন স্কুলে এসে সহজেই বন্ধু খুঁজে পায় রাশেদ। বরাবরই রাশেদ সবার থেকে একটু ভিন্ন রকমের ছিল। এ বয়সেই সে দেশ নিয়ে চিন্তা করতো। তার পাগলাটে বাবার (রাশেদের মতে) সাথে রাজনৈতিক বিষয় নিয়ে আলোচনা করতো। স্কুলে মজার ক্লাস আর বন্ধুদের সাথে নানা ধরনের খেলাধুলায় ভালই কাটছিল দিন। হঠাৎ বেধে যায় স্বাধীনতা যুদ্ধ। পাক হানাদাররা এদেশের সাধারণ মানুষের উপর শুরু করে অবর্ণনীয় অত্যাচার। দেশকে বাঁচাতে, দেশের মানুষকে বাঁচাতে গঠিত হয় মুক্তিবাহিনী। তাতে যোগদেয় এলাকায় ওদের হিরো শফিক ভাই সহ নানা বয়সের নানা পেশার মানুষ। স্কুল বন্ধ। হাত পা গুটিয়ে বসে থাকার লোক না রাশেদ। তাছাড়া দেশের এমন অবস্থায় বসে থাকে কি করে! মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করার পন করে ও। কাজও পেয়ে যায়। গুলি লেগে শফিল ভাই হাসপাতালে ভর্তি থাকেন রাজাকারদের পাহারায়। বন্ধুদের নিয়ে হাসপাতাল থেকে তাকে উদ্ধার করে রাশেদ। এরপর মুখোমুখি সত্যিকারের যুদ্ধের! ধীরেধীরে বন্ধুরা সবাই পরিবারের সাথে নিরাপদে চলে যায়। একা হয়ে পরে রাশেদ।মুক্তিযোদ্ধাদের সাহায্য করে সব জীবন-মরন অভিযানে। লাখোলাখো প্রানের বিনিময়ে বাংলার বুকে আসে স্বাধীনতা। ফিরে আসতে শুরুকরে রাশেদের সব বন্দুরা। কিন্তু ততদিনে রাশেদের কি হয়েছে? একাকী রাশেদ কোথায় ছিল? কেমন ছিল? এখন ই বা কেমন আছে? সব উত্তর মিলবে বইয়ে। পড়তে বসলে হারিয়ে যেতে হবে ৭১ এর রনাঙনে। ঠিক রাদেশের মত। একজন রাশেদ হয়ে...!
Childrens-Book
2
This book is a rare piece of property for Bangladesh, as it was written by the Great leader of Bangladesh, bangabandhu Sheikh Mujibur Rahman, which contains the unknown history of Bangladesh. This book inspires us how we can resolve problems in crisis moment and how a leader struggles continuously for making a country independent without any sort of personal benefit . Each and every young generation should read this book for knowing the true historical back ground of Bangladesh.
Political
3
বই : কেউ কাছে কেউ দূরে। উপন্যাস : রিইউনিয়ন। লেখক : বুদ্ধদেব গুহ। প্রকাশক : আনন্দ পাবলিশার্স প্রাইভেট লিমিটেড। মূল্য : ৩০০টাকা। #লেখক_পরিচিতি : বুদ্ধদেব গুহ ১৯৩৬ সালের আজকের এই দিনে মানে ২৯ শে জুন কলকাতায় জন্মগ্রহণ করেন। তিনি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে সুপরিচিত সেন্ট জেভিয়ার্স কলেজে পড়াশুনা করেন। পেশায় তিনি একজন চার্টাড অ্যাকাউন্ট্যান্ট। এছাড়া তিনি বিভিন্ন সময়ে পশ্চিমববঙ্গ সরকারের বিভিন্ন উপদেষ্টা বোর্ডের সদস্য ছিলেন।তিনি ভাল রবীন্দ্র সংগীত গাইতে জানেন। #কাহিনী_সংক্ষেপ : বন্ধুর স্ত্রী হাসির সাথে শান্তিনিকেতন যাচ্ছে পচা,যাকে হাসি অবুদা বলে ডাকে। অবনী থেকে অবুদা হতে পারে,কিন্তু অর্ণব থেকে কি করে অবুদা হয় তা পচার মাথায় ঢোকে না। ট্রেনে বসে গল্প করতে করতে কখন যে পৌঁছে গেল স্টেশনে তা ঠিক খেয়াল করতে পারিনি দুজনেই। রেল থেকে নেমে মার্সিডিজএ করে সোজা শান্তিনিকেতন পৌঁচায় ওরা। বিশাল আলিশান প্রসাদসম বাড়ি, বাড়ির সামনে পেছনে চোখ ধাঁধানো বিশাল বাগান; চাকরবাকর, ধোপা, আয়া, মালি নিয়ে এ বাড়িকে রাজপ্রসাদ বললেও ভুল হবে না। হাসি অবুদাকে গেস্ট রুম দেখিয়ে ফ্রেস হতে বলে, নিজে যায় খাবার ব্যবস্থা দেখতে। আর পচা, হাসির অবুদা চলে যায় ফ্ল্যাশব্যাকে। দীর্ঘ চল্লিশ বছর পর সল্ট লেকের পারে হঠাৎ তাদের সেই রিইউনিয়নে। যেখানে দেখা হয় স্কুল তথা বাল্যবন্ধু গদাই, ঝাবু, গুটলু, সুশান্ত, সবুজ, ন্যাকাসহ আরো অনেকের সাথেই। অতীত আর বর্তমান জীবন্ত হয়ে উঠে চোখের সামনে। স্কুলের সেই হাফ প্যান্ট পরা ছেলে আর কেউ নেই। সবাই পুরাদস্তুর সফল মানুষ। কেউ ডাক্তার, কেউ ইঞ্জিনিয়ার, কেউ ব্যবসায়ী আবার কেউ বা কেরানি। অনেক স্মৃতি আর না বলা গীতি ছলকে উঠে মুহূর্তেই। বিবাহিতরা সস্ত্রীক এসেছে,আর কেউ কেউ এখনো রয়ে গেছে ব্যাচেলার। এই রিইউনিয়নে এসেই পচার দেখা হয় তার না বলা অথবা চোখের ইশারায় বলা প্রমিকার সাথে! মুহূর্তে পায়ের নিচে টলে উঠে মাটি। হাসির ডাকে অতীত থেকে ফিরে আসে বর্তমানে। এই পরের কাহিনীই বলেন আর হাসি ও তার অবুদার অতীত ও বর্তমানই বলেন, জানতে হলে আপনাকে বইটা পড়তে হবে। #পাঠপ্রতিক্রিয়া: কলকাতার বই আমায় খুব একটা টানেনা। তবুও যখন পড়েই ফেলেছি তবে বুঝেনিন! আসলে রিইউনিয়ন এমন কাহিনী যা আপনাকে বর্তমান থেকে নিয়ে যাবে অতীতে। আবার অতীতের ভেলায় ভাসিয়ে ফিরিয়ে এনে দাঁড় করাবে কঠিন বর্তমানে। নিজের জীবনের ছোটখাটো ঘটনা গুলো রোমন্থনের সুযোগ পাবেন আপনি। সব মিলিয়ে ভালোই লেগেছে। বই হোক ভালবাসার প্রতীক।
Thriller
1