id
stringlengths
3
7
url
stringlengths
31
795
title
stringlengths
1
93
text
stringlengths
13
179k
en_url
stringlengths
30
381
en_title
stringlengths
1
351
en_text
stringlengths
0
21.3k
1218
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%85%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF
অর্থনীতি
অর্থনীতি বা অর্থশাস্ত্র সামাজিক বিজ্ঞান এর একটি শাখা যা পণ্য এবং সেবার উৎপাদন, সরবরাহ, বিনিময়, বিতরণ এবং ভোগ ও ভোক্তার আচরণ নিয়ে আলোচনা করে। সম্পদ সীমিত কিন্তু চাহিদা অফুরন্ত– এই মৌলিক পরিপ্রেক্ষিতে সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করা অর্থনীতির প্রধান উদ্দেশ্য৷ এল.রবিন্স এর প্রদত্ত সংজ্ঞাটি বেশিরভাগ আধুনিক অর্থনীতির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। তিনি বলেন, "অর্থনীতি মানুষের অসীম অভাব ও বিকল্প ব্যবহারযোগ্য সীমিত সম্পদের সম্পর্ক বিষয়ক মানব আচরণ নিয়ে আলোচনা করে।" এল.রবিন্সের সংজ্ঞাটি বিশ্লেষণ করলে দেখা যায় যে এটি মানব জীবনের তিনটি মৌলিক বৈশিষ্টের উপর প্রতিষ্ঠিত, যথা অসীম অভাব, সীমিত সম্পদ ও বিকল্প ব্যবহারযোগ্য সম্পদ। অর্থনীতির পরিধিসমূহ বিভিন্ন ভাগে বা শ্রেণীতে ভাগ করা যায়, যেমনঃ ব্যষ্টিক অর্থনীতি ও সামষ্টিক অর্থনীতি নেতিবাচক অর্থনীতি ও ইতিবাচক অর্থনীতি মেইনস্ট্রীম ও হেটারোডক্স অর্থনীতি আধুনিক অর্থনীতিকে দুই ভাগে ভাগ করা যায়, (১) ব্যষ্টিক অর্থনীতি ও (২) সামষ্টিক অর্থনীতি৷ ব্যষ্টিক অর্থনীতি মূলত ব্যক্তি মানুষ অথবা ব্যবসায়ের চাহিদা ও যোগান নিয়ে আলোচনা করে থাকে ৷ অন্যদিকে সামষ্টিক অর্থনীতি একটি দেশের সামগ্রিক অর্থনীতির জাতীয় আয়, কর্মসংস্থান, মুদ্রানীতি, ইত্যাদি বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা করে৷ অন্য ভাবে বলা যায় যে, ব্যষ্টিক অর্থনীতির লক্ষ্য হলো অর্থনীতির একটি বিশেষ অংশ বা একককে ব্যক্তিগত দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করা এবং সামষ্টিক অর্থনীতি অর্থনীতির সামগ্রিক বিষয়াদি বিশ্লেষণ করে থাকে। অর্থনীতির বিভিন্ন সংজ্ঞা উনিশ শতকের শেষের দিকে আলফ্রেড মার্শাল, 'রাজনৈতিক অর্থনীতি' থেকে অর্থনীতি বিজ্ঞানের সংক্ষিপ্ত রূপ হিসেবে 'অর্থনীতি'-কে পুনঃনামকরণ করেন। এই সময়ে এটা শৃঙ্খলাবদ্ধ চিন্তাভাবনার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায় এবং গণিতের ব্যবহার ব্যাপকহারে বেড়ে যায়, যা এটাকে রাষ্ট্রবিজ্ঞান এবং সামাজিক বিজ্ঞানের বাইরে বিজ্ঞানের আলাদা একটি শাখা হিসেবে গ্রহণযোগ্যতা অর্জনে সহায়তা করে। আধুনিক অর্থনীতির বিভিন্ন ধরনের সংজ্ঞা রয়েছে; কিছু এই বিষয়ের বিবর্তিত চেহারা প্রতিফলিত করে এবং বিভিন্ন অর্থনীতিবিদদের দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত করে। আলফ্রেড মার্শাল তার বই Principles of Economics (১৮৯০)-এ অর্থনীতির সবচেয়ে জনপ্রিয় সংজ্ঞা দিয়েছেন। তার মতে, " অর্থনীতি মানুষের ব্যাক্তি জীবনের সাধারণ ঘটনাবলী নিয়ে আলোচনা করে। এটা সম্পদ আহরণ এবং এর ব্যবহার নিয়ে আলোচনা করে। সুতরাং একদিক দিয়ে এটা মানুষের সম্পদ নিয়ে আলোচনা করে অন্যদিকে এর গুরুত্বপূর্ণ দিক হল এটা মানুষের জীবনের একটি অংশ নিয়ে আলোচনা করে।" অধ্যাপক মার্শাল বলেন,"অর্থনীতি মানবজীবনের সাধারণ কার্যাবলী নিয়ে আলোচনা করে"। অর্থনীতির প্রারম্ভিক কথা উৎপাদন ও বণ্টন আলোচনার দীর্ঘ ইতিহাস থাকলেও অর্থনীতির জনক হিসেবে খ্যাত অ্যাডাম স্মিথ কর্তৃক ১৭৭৬ খ্রীস্টাব্দে রচিত গ্রন্থ An Inquiry into the Nature and Causes of the Wealth of Nations নামক গ্রন্থে অর্থনীতিকে ‌‌‌সম্পদের বিজ্ঞান‌ আখ্যায়িত করে বলেন, 'Economics is Science of wealth'। তার সংজ্ঞার মূল বিষয়বস্তু হল সম্পদ উৎপাদন ও ভোগ। অর্থনীতির সাথে উন্নয়ন সরাসরি সম্পর্কিত। ১৯৯৮ সালে অর্থনীতিতে নোবেলজয়ী ভারতীয় অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, "জনসাধারণের সক্ষমতার নামই উন্নয়ন"। ব্যষ্টিক অর্থনীতি ব্যষ্টিক অর্থনীতি মূলত ব্যক্তি এবং ফার্ম এর অর্থনৈতিক আচরণ নিয়ে এবং তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক বাজার, বিরাজমান দুষ্প্রাপ্যতা ও সরকারি নিয়মাবলির মাধ্যমে বিশ্লেষণ করে। ব্যষ্টিক অর্থনীতি হচ্ছে অর্থনীতির একটি শাখা যা ব্যক্তি, পরিবার ও ফার্ম কীভাবে বাজারে তাদের বণ্টনকৃত সীমিত সম্পদ নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে তা নিয়ে আলোচনা করে। বাজার বলতে বোঝায় যেখানে দ্রব্য অথবা সেবাসমূহ কেনা-বেচা করা হয়। দ্রব্য অথবা সেবাসমূহের চাহিদা ও যোগান এইসব সিদ্ধান্ত ও আচরণের উপর কী-ভাবে প্রভাব ফেলে ব্যষ্টিক অর্থনীতি তা নিরীক্ষা করে। বাজারে অবশ্যই একটি দ্রব্য বিদ্যমান থাকবে। এই তত্ত্বে প্রতিটি উপাদানকে ক্রেতা সামগ্রিক চাহিদার পরিমাণকে বিবেচনা করে এবং বিক্রেতা সামগ্রিক যোগানের পরিমাণকে বিবেচনা করে। দাম ও চাহিদার উপর ভিত্তি করে বাজার ভারসাম্য পৌছে। বৃহৎ দৃষ্টিতে একে চাহিদা এবং যোগানের বিশ্লেষণ বলা হয়। বাজার কাঠামো যেমন পূর্ণ প্রতিযোগিতা এবং একচেটিয়া বাজার আচরণ ও অর্থনৈতিক ইফিসিয়েন্সি এর জন্য বাধাস্বরূপ। সাধারণ অনুমিত শর্ত থেকে যখন বিশ্লেষণ আরম্ভ হয় এবং বাজারের আন্যান্য আচরণ অপরিবর্তিত থাকে, তাকে আংশিক ভারসাম্য বিশ্লেষণ বলা হয়। সাধারণ ভারসাম্য তত্ত্বে বিভিন্ন বাজারের পরিবর্তন এবং সকল বাজারের সামগ্রিক পরিবর্তন এবং ভারসাম্যের বিপরীতে তাদের গতিবিধি ও আন্তঃসম্পর্ক বিবেচনা করা হয়। সামষ্টিক অর্থনীতি সামষ্টিক অর্থনীতি অর্থনীতির নিয়ামকসমূহকে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণ করে। সামগ্রিক বলতে জাতীয় আয় ও জাতীয় উৎপাদন, বেকারত্বের হার ও মূদ্রাষ্ফীতিকে এবং আংশিক সামগ্রিক মোট ভোগ, বিনিয়োগ ব্যয় ও তাদের উপাদানকে বুঝায়। আর্থিক নীতি ও রাজস্ব নীতিকেও ইহা অধ্যয়ন করে। ১৯৬০ সাল থেকে সামষ্টিক অর্থনীতি আরও অনেক ক্ষেত্রে তার বিশ্লেষণ বৃদ্ধি করছে যেমন, বিভিন্ন খাতের ব্যষ্টিকভিত্তিক মডেল, ভোক্তার যৌক্তিকতা, বাজার তথ্যের সঠিক ব্যবহার, অসম্পূর্ণ প্রতিযোগিতা। এছাড়াও সামষ্টিক অর্থনীতি বিবেচনাধীন উপাদানসমূহের উপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব এবং একটি দেশের ও দেশের অভ্যন্তরে জাতীয় আয়ের প্রবৃদ্ধি নিয়েও বিশ্লেষণ করে। উপাদানসমূহের মধ্যে মূলধন, প্রযুক্তি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধি উল্লেখযোগ্য। অর্থনীতি সম্পর্কিত অন্যান্য ক্ষেত্র, অন্যান্য পার্থক্য এবং শ্রেণিবিভাগ ব্যষ্টিক অর্থনীতি সম্পর্কিত সাম্প্রতিক উন্নয়নে আচরণিক অর্থনীতি ও পরীক্ষামূলক অর্থনীতি নামে দুটি শাখা অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। এছাড়াও সামাজিক বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখাকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে যেমন, অর্থনৈতিক ভূগোল, অর্থনৈতিক ইতিহাস, সাধারণ পছন্দ, সাংস্কৃতিক অর্থনীতি এবং প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি। অন্যভাবে অর্থনীতিকে দুই ভাবে ভাগ করা হয়। নীতিবাচক অর্থনীতি অর্থনৈতিক আচরণকে ব্যাখ্যা করে, অন্য দিকে ইতিবাচক অর্থনীতি পছন্দ এবং মূল্য নির্ধারণ ইত্যাদি বিষয়কে প্রাধান্য দেয়। আবার অর্থনীতিকে মেইনষ্টীম অর্থনীতি ও হেটারোডক্স অর্থনীতি এই দুই ভাগে ভাগ করা যায়। 'Journal of Economic Literature' এ প্রকাশিত 'JEL classification codes' প্রবন্ধে অর্থনীতির শ্রেণিবিভাগ ও প্রবন্ধ ভিত্তিক অনুসন্ধান নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে এবং 'The New Palgrave: A Dictionary of Economics' বইটিতে অর্থনীতির বিভিন্ন শ্রেণিবিভাগ ও উপশ্রেণিবিভাগ বিদ্যমান তা উল্লেখ করা হয়েছে। গাণিতিক অর্থনীতি ও পরিমাণগত অর্থনীতি অর্থনীতি একটি অধীতব্য বিষয় যা কখনও জ্যামিতিক পদ্ধতি ব্যবহার করে, কখনও সাহিত্যিক পদ্ধতি ব্যবহার করে। পল স্যামুয়েলসন তার বিখ্যাত গ্রন্থ 'Foundations of Economics Analysis'(১৯৪৭)-এ অর্থনীতির বিভিন্ন ক্ষেত্রে একটি সাধারণ গাণিতিক কাঠামো দাঁড় করিয়েছেন। ইকোনোমেট্রিক্স ইকোনোমেট্রিক্স অর্থনৈতিক মডেলসমূহের উপাত্ত সম্পর্কিত বিশ্লেষনে গাণিতিক ও পরিসংখ্যানিক পদ্ধতিতে প্রয়োগ করা হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, একটি তত্ত্বে অণুমিত শর্ত ধরা হয় যে অন্যান্য সব কিছু অপরিবর্তিত থেকে একজন বেশি শিক্ষিত ব্যক্তি একজন কম শিক্ষিত ব্যক্তির চাইতে বেশি আয় করবে। অর্থনৈতিক পরিমাপকগুলো বিভিন্ন সম্পর্কের গাণিতিক ও পরিসংখ্যানিক বিষয়গুলো অন্তর্ভুক্ত করে। ইকোনোমেট্রিক্স পরিমাণগত পরিমাপের চিত্র তুলে ধরতে পারে। এগুলো অন্তর্ভুক্ত হয় বিভিন্ন তত্ত্ব পরীক্ষার বা পরিশোধনের জন্য, বিগত চলক গুলোকে বর্ণনা এবং আগামীতে আসবে এ ধরনের চলকের সম্পর্কে ভবিষ্যদ্বাণী করার জন্য। জাতীয় পরিমাপ জাতীয় পরিমাপগুলো হচ্ছে একটি জাতির অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডসমূহের সংক্ষেপে প্রকাশিত করার পদ্ধতি। জাতীয় পরিমাপ হচ্ছে দ্বৈত গণনা পদ্ধতি যাতে কিছু তথ্যের সুনির্দিষ্ট পরিমাণ উল্লেখ থাকে। এগুলো জাতীয় আয় ও দ্রব্য পরিমাপ (NIPA)কে অন্তর্ভুক্ত করে, যা এক বছর বা বছরের একটি অংশে উৎপাদিত দ্রব্য এবং আয়কে অর্থ আকারে পরিমাপ করে। নিপা(NIPA) একটি অর্থনীতির গতিপথের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ করে থাকে এবং বাণিজ্য চক্র বা দীর্ঘ সময় ধরে তা পরিমাপ করে। দ্রব্যমুল্যের তথ্যসমূহ সাধারণ ও প্রকৃত পরিমাপের মধ্যে পার্থক্য করতে পারে, যা অতিরিক্ত সময়ের মূল্যস্তর পরিবর্তনের জন্য মোট অর্থের পরিমাণ সঠিকভাবে পরিমাপ করতে পারে। এই জাতীয় পরিমাপগুলো বিনিয়োগ মজুত, জাতীয় সম্পদ এবং আন্তর্জাতিক মুলধন প্রবাহের হিসাবকেও অন্তর্ভুক্ত করে থাকে। অর্থনীতির পরিধি কৃষি অর্থনীতি কৃষি অর্থনীতি হচ্ছে অর্থনীতির একটি সর্বপ্রাচীন এবং সুপ্রতিষ্ঠিত শাখা। ইহা কৃষিক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তারকারী অর্থনৈতিক শক্তিসমূহ এবং অর্থনীতির বাকী অংশে প্রভাব বিস্তারকারী কৃষি ক্ষেত্র সমূহকে নিয়ে আলোচনা করে। ইহা হচ্ছে অর্থনীতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ, যা জটিল বিশ্বের প্রকৃত অবস্থার নিরিখে ব্যষ্টিক অর্থনীতির তত্ত্ব প্রয়োগে প্রয়োজনীয়তা তুলে ধরে এবং অনেক সাধারণ আবেদনকে খুব বেশি গুরুত্ব দেয়; ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তা, গৃহস্থালি আচরণ এবং সম্পদের অধিকার ও প্রাপ্যতার মধ্যে সম্পর্ক। সম্প্রতি এর পদ্ধতিতে আন্তর্জাতিক দ্রব্য বাণিজ্য এবং পরিবেশ নীতি অন্তর্ভুক্তি হয়েছে। উন্নয়ন ও প্রবৃদ্ধি অর্থনীতি প্রবৃদ্ধি অর্থনীতি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির উপাদানগুলোকে নিয়ে আলোচনা করে। অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হচ্ছে একটি দীর্ঘকালীন সময়ে একটি দেশের মাথাপিছু উৎপাদন বৃদ্ধির পরিমাণ। বিভিন্ন দেশের মাথাপিছু উৎপাদনের মধ্যে পার্থক্য দেখানোর জন্য এক ধরনের একক ব্যবহার করা হয়। বেশির ভাগ উপাদানই বিনিয়োগ, জনসংখ্যা বৃদ্ধি ও প্রযুক্তিগত পরিবর্তনের হারকে অন্তর্ভুক্ত করে। এই উপাদানগুলো তত্ত্বীয় ও ব্যবহারিক ভাবে (নিওক্লাসিক্যাল প্রবৃদ্ধি মডেল অনুসারে) এবং প্রবৃদ্ধি পরিমাপে প্রতিনিধিত্ব করে থাকে। নির্দিষ্ট কিছু স্তরে, উন্নয়ন অর্থনীতি স্বল্প আয়ের দেশসমূহ সংশ্লিষ্ট উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় কাঠামোগত পরিবর্তন, দারিদ্রতা এবং অর্থনৈতিক প্রগতিকে সামনে রেখে অর্থনৈতিক হাতিয়ার সমূহকে বিশ্লেষণ করে। উন্নয়ন অর্থনীতি কর্পোরেটবিহীন সামাজিক ও রাজনৈতিক উপাদানসমূহকে কাজে লাগায়। অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া হচ্ছে অর্থনীতির শাখা যা সামাজিক মালিকানা, পরিচালনা এবং অর্থনৈতিক সম্পদ বণ্টনে পদ্ধতি ও প্রতিষ্ঠান নিয়ে আলোচনা করে। সমাজের একটি অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া হচ্ছে বিশ্লেষনের একক। আধুনিক পদ্ধতিতে সংগঠনকে সমাজতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও পুঁজিবাদ ব্যবস্থা ভাগে ভাগ করা হয়, যাহাতে বেশির ভাগ উৎপাদন হয়ে থাকে যথাক্রমে রাষ্ট্রীয় মালিকানায় ও বেসরকারী এন্টারপ্রাইজের মাধ্যমে। উভয় ব্যবস্থা প্রচলিত থাকলে তাকে মিশ্র অর্থনীতি বলা হয়। একটি সাধারণ উপাদান অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক শক্তিসমুহকে সংমিশ্রন করে, যাকে রাজনৈতিক অর্থনীতি বলা হয়। তুলনামূলক অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া বিভিন্ন অর্থনীতি বা প্রক্রিয়ার মধ্যে সম্পর্কযুক্ত শক্তি ও আচরণ নিয়ে আলোচনা করে। অর্থব্যবস্থাবিষয়ক অর্থনীতি অর্থব্যবস্থাবিষয়ক অর্থনীতি আর্থিক কর্মকাণ্ড পরিচালনা এবং ঝুঁকিপূর্ণ পরিবেশে আর্থিক সম্পদ বণ্টন কীভাবে করা যায় তা নিয়ে আলোচনা করে। তাই অর্থব্যবস্থাবিষয়ক অর্থনীতি অর্থ বাজার, আর্থিক সরঞ্জামসমূহ ও কোম্পানীসমূহের আর্থিক কাঠামো সন্বন্ধে আলোকপাত করে। ক্রীড়া তত্ত্ব ক্রীড়া তত্ত্ব ফলিত গণিতের একটি শাখা যা উপাদান সমূহের মধ্যে কৌশলগত প্রতিক্রিয়া নিয়ে বিশ্লেষণ করে। কৌশলগত ক্রীড়ায় খেলোয়াড় প্রতিপক্ষের আরোপিত কৌশলসমূহের মধ্যে যেটি তার সুবিধা সর্বোচ্চ করণ করবে সেটি গ্রহণ করবে। ইহা সামাজিক অবস্থার প্রেক্ষিতে সিদ্ধান্তগ্রহণকারী তার প্রতিপক্ষের সহিত ক্রীড়াক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণে প্রচলিত নিয়ম ব্যাখ্যা করে থাকে। ক্রীড়া তত্ত্ব বাজার বিশ্লেষণের জন্য সর্বোচ্চ করণ আচরণ উন্নয়নের ধারণা দেয় যেমন চাহিদা ও যোগান মডেল। ১৯৪৪ সালে জন ভন নিউম্যান ও অস্কার মরগেন্সটেরন এর 'Theory of Games and Economic Behavior' এর মাধ্যমে 'ক্রীড়া তত্ত্ব' এর সুত্রপাত হয়। অর্থনীতি ছাড়াও পারমাণবিক কৌশল, দর্শন, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইত্যাদি ক্ষেত্রে ক্রীড়া তত্ত্বের প্রয়োগ করা হয়। শিল্প সংস্থা শিল্প সংস্থা ফার্মসমূহের কৌশলগত আচরণ, বাজার কাঠামো এবং তাদের প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে। সাধারণ বাজার কাঠামোসমূহ হচ্ছে পূর্ণ প্রতিযোগিতা বাজার, একচেটিয়া প্রতিযোগিতা, অলিগোপলির বিভিন্ন ধরন এবং একচেটিয়া বাজার। তথ্য অর্থনীতি তথ্য অর্থনীতি অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণে তথ্যের উপস্থিতি বা অনুপস্থিতি কীভাবে প্রভাবিত করে তা বিশ্লেষন করে। তথ্য অসংগতি ধারণাটি এক্ষেত্রে গুরুত্ত্বপূর্ন যখন এক পক্ষের অন্য পক্ষের তুলনায় বেশি বা নির্ভরযোগ্য তথ্য থাকে। তথ্য অসংগতি নৈতিক অবক্ষয়, বিরুপ নির্বাচনের মত সমস্যাকে বাড়িয়ে তোলে, যা চুক্তি মতবাদে বিশ্লেষন করা হয়। তথ্য অর্থনীতি অর্থব্যবস্থা, বীমা, চুক্তি মতবাদ এবং ঝুঁকি ও অনিশ্চয়তায় সিদ্ধান্ত গ্রহণ ইত্যাদি বিষয়ের সাথে সম্পর্কযুক্ত। আন্তর্জাতিক অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্য আন্তর্জাতিক সীমান্তসমূহের মধ্যে দ্রব্য ও সেবা প্রবাহ নির্ণয় নিয়ে বিশ্লেষন করে। আন্তর্জাতিক অর্থব্যবস্থা সামষ্টিক অর্থনীতির একটি অংশ যা আন্তর্জাতিক সীমান্তসমূহের মধ্যে মূলধন প্রবাহ ও এক্সচেঞ্জ রেটের উপর ইহা কি প্রভাব ফেলে তা নিয়ে আলোচনা করে। বিভিন্ন দেশের মধ্যে দ্রব্য, সেবা ও মূলধনের বাণিজ্য বৃদ্ধির অন্যতম কারণ হচ্ছে প্রতিযোগিতামূলক বিশ্বায়ন। শ্রম অর্থনীতি শ্রম অর্থনীতি শ্রম বাজার কার্যক্রম ও শ্রম প্রবাহ পর্যবেক্ষণ করে। শ্রমিক ও মালিকের পারস্পরিক প্রতিক্রিয়ার মাধ্যমে শ্রম বাজার কার্যক্রম পরিচালিত হয়ে থাকে। শ্রম অর্থনীতি শ্রম সেবা প্রদানকারী (শ্রমিক), যে ব্যক্তির শ্রমের চাহিদা রয়েছে (মালিক), মজুরি নির্ধারণের প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ, কর্মরত ও বেকার শ্রমিক এবং বেকার সমস্যা সমাধান নিয়ে পর্যালোচনা করে। কল্যাণ অর্থনীতি কল্যাণ অর্থনীতি হচ্ছে অর্থনীতির একটি শাখা যা ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে একটি অর্থনীতির বণ্টনকৃত দক্ষতা নির্ধারণ ও ইহা সংশ্লিষ্ট আয় বণ্টন নিয়ে আলোচনা করে। ইহা ব্যক্তি ও সমাজের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড পরীক্ষার মাধ্যমে সামাজিক কল্যাণ পরিমাপের চেষ্টা করে। পরিবেশ অর্থনীতি পরিবেশ অর্থনীতি পরিবেশ দূষণ,এর জন্য অনুৎসাহ প্রদান বা পরিবেশ রক্ষার জন্য সচেতনতা নিয়ে আলোচনা করে। বাস্তবিক পক্ষে উৎপাদন বা ভোগের উপর খারাপ প্রভাব যেমন বায়ু দূষণ , পানি দূষণ, মাটি দূষণ বাজার ব্যবস্থাকে ব্যর্থ করে দিতে পারে। পরিবেশ অর্থনীতি মূলতঃ সরকারী নীতি এইসব ব্যর্থতাকে কীভাবে সমাধান করবে তা নিয়ে আলোচনা করে। সরকারী নীতি কিছু নিয়মকে প্রতিফলিত করে যা ব্যয়-মূনাফা বিশ্লেষন নামে পরিচিত বা বাজার এসব সমাধান করে বিভিন্ন ফি পুনঃনির্ধারণের মাধ্যমে বা সম্পদের অধিকারের সংজ্ঞা পরিবর্তনের মাধ্যমে। আইন ও অর্থনীতি আইন ও অর্থনীতি অথবা আইনের অর্থনৈতিক বিশ্লেষন হচ্ছে প্রকৃত তত্ত্বের প্রতিফলন যা আইনে অর্থনৈতিক পদ্ধতিকে প্রয়োগ করে। ইহা প্রকৃত আইনের প্রভাব ব্যাখ্যার অর্থনৈতিক ধারণা, কোন আইন প্রয়োগের অর্থনৈতিক গুরুত্ব ও কোনটি প্রয়োগে কি প্রভাব ফেলে এইসব বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে। ১৯৬১ সালে রোনাল্ড কজ এর একটি নিবন্ধে পরামর্শ দেয়া হয় যে, সম্পত্তির অধিকার সঙ্গায়িত করা যায় বাহ্যিকতার সমস্যা দিয়ে। ব্যবস্থাপনা অর্থনীতি ব্যবস্থাপনা অর্থনীতি সামষ্টিক অর্থনীতি বিশ্লেষণে বিশেষ করে ব্যবসায়ী ফার্মসমূহ ও ব্যবস্থাপনা বিভাগের সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা হয়। ইহা পরিমাণগত পদ্ধতি যেমন গবেষণা কার্যক্রম ও প্রোগ্রামিং এবং পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি যেমন সংশ্লেষাংক বিশ্লেষণ কোন ঝুঁকি ছাড়াই ও সঠিক প্রক্রিয়ায় তুলে ধরতে পারে। একটি ভাল ধারণা ব্যবসায়িক সিদ্ধান্ত সফলের সাথে সাথে উৎপাদন খরচ সর্বনিম্নকরণ, মূনাফা সর্বোচ্চকরণ, ফার্মের উদ্দেশ্য এবং প্রযুক্তি ও বাজার পরিস্থিতির প্রেক্ষিতে উৎপাদন পদ্ধতি নির্ধারণ করতে সাহায্য করে। সরকারী অর্থব্যবস্থা সরকারী অর্থব্যবস্থা অর্থনীতির একটি শাখা যা সরকারী বিভিন্ন খাতের রাজস্ব ও উন্নয়ন বাজেট নিয়ে আলোচনা করে। এই বিষয়টি করদাতা নির্ধারণ, সরকারী বিভিন্ন কর্মসূচীর ব্যয়-মুনাফা বিশ্লেষন, বিভিন্ন প্রকার ব্যয় ও করের অর্থনৈতিক দক্ষতা ও আয় বণ্টন এবং রাজস্ব নীতি নিয়ে আলোচনা করে। ইহা ছাড়াও সরকারি পছন্দ তত্ত্ব, সরকারী ক্ষেত্রসমূহে ব্যষ্টিক অর্থনীতির আচরণ এবং ভোটার, রাজনীতিবিদ ও আমলাদের পারস্পরিক সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। চাহিদা ও যোগান চাহিদা ও যোগান তত্ত্ব একটি কাঠামোগত যা দ্রব্যের দাম ও পরিমাণ নিয়ে আলোচনা করে এবং বাজার অর্থনীতিতে এর প্রতিক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে। সামষ্টিক অর্থনীতি তত্ত্বসমূহে একটি প্রতিযোগিতামুলক বাজারে দ্রব্যের দাম ও পরিমাণ নির্ণয়ে ইহা ব্যবহার করা হয়ে থাকে। ইহা একটি বাজার গঠনে অন্য বাজারের কাঠামো ও তত্ত্বগত আচরণের উপর নির্ভর করে স্তম্ভের মত কাজ করে। একটি দ্রব্যের বিদ্যমান বাজারে দ্রব্যের পরিমাণ নির্ভর করে তার চাহিদার উপর যেখানে সকল ক্রেতা দ্রব্যটির প্রতিটি একক মূল্যে ক্রয়ের জন্য প্রস্তুত থাকে। চাহিদা মূলতঃ একটি টেবিল বা একটি চিত্রের প্রতিফলন যা দ্রব্যের দাম ও পরিমাণের সাথে সম্পর্কযুক্ত (চিত্রটি লক্ষ করুন)। চাহিদা তত্ত্ব আলোচনা করে যে, ভোক্তা বিদ্যমান আয়, দাম, পছন্দ ইত্যাদিতে যৌক্তিকভাবে প্রতিটি দ্রব্যের বিভিন্ন পরিমাণ পছন্দ করবে। এক্ষেত্রে 'উপযোগ সর্বোচ্চকরণ প্রতিবন্ধক' শব্দটি ব্যবহৃত হয় (চাহিদার জন্য আয় একটি প্রতিবন্ধক)। এখানে 'উপযোগ' প্রতিটি ভোক্তার পছন্দের সাথে সম্পর্কযুক্ত। উপযোগ এবং আয় অণুসিদ্ধান্তমূলক বৈশিষ্ট্যের মডেলে দ্রব্যের দামের পরিবর্তনে চাহিদার পরিবর্তন নির্ণয়ে ব্যবহার করা হয়। চাহিদা তত্ত্বে বলা হয় যে, একটি বিদ্যমান বাজারে সাধারণত দাম ও চাহিদা বিপরীত সম্পর্কযুক্ত। অন্যভাবে বলা যায় যে, দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেলে কম ভোক্তার ক্রয় ক্ষমতা ও ক্রয়ের ইচ্ছা থাকবে (অন্যান্য সব কিছু অপরিবর্তিত থেকে)। দ্রব্যের দাম বৃদ্ধি পেলে ক্রেতার ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস পায় (আয় প্রভাব) এবং ভোক্তা কম মূল্যের পরিবর্তিত দ্রব্যের দিকে ঝুঁকবে (পরিবর্তক প্রভাব)। অন্যান্য উপাদানও চাহিদার উপর প্রভাব ফেলে; উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, আয় বৃদ্ধি পেলে চাহিদা রেখা মূলবিন্দু থেকে দূরে সরবে। যোগান হচ্ছে দ্রব্যের দাম ও ঐ দামে বিক্রেতার কাছে থাকা দ্রব্যের পরিমাণের মধ্যে সম্পর্ক। যোগান মূলতঃ একটি টেবিল বা একটি চিত্রের প্রতিফলন যা দ্রব্যের দাম ও সরবরাহকৃত পরিমাণের সাথে সম্পর্কযুক্ত । উৎপাদক মূনাফা সর্বোচ্চকরণ অণুসিদ্ধান্ত গ্রহণ করে,যার অর্থ উৎপাদক সেই পরিমাণ দ্রব্য উৎপাদন করবে যা তার মূনাফা সর্বোচ্চ করবে। যোগান মূলতঃ দাম ও সরবরাহকৃত দ্রব্যের পরিমাণের অণুপাত (অন্যান্য সব কিছু অপরিবর্তিত থেকে)। অন্যভাবে বলা যায় যে, দ্রব্যটির সর্বোচ্চ দামে বিক্রয় করা যাবে, বেশির ভাগ উৎপাদক সেই পরিমাণ দ্রব্য সরবরাহ করে। দাম বৃদ্ধি দ্রব্যের মূনাফা বাড়িয়ে উৎপাদন বৃদ্ধি করবে। ভারসাম্যের কম দামে দ্রব্যের চাহিদার তুলনায় সরবরাহের পরিমাণ কম থাকবে। ইহা দাম বৃদ্ধি করবে। ভারসাম্যের বেশি দামে দ্রব্যের চাহিদার তুলনায় দ্রব্যের সরবরাহের পরিমাণ বেশি থাকবে। ইহা দাম কমাবে। চাহিদা ও যোগান মডেলে চাহিদা ও যোগান রেখায় নির্ধারিত হয়, দাম ও পরিমাণ স্থির হবে একটি দামে যেখানে দ্রব্যের চাহিদা ও যোগান সমান হবে। ইহা চিত্রে দুটি রেখার পরস্পর ছেদ বিন্দু, যাকে বাজার ভারসাম্য বলা হয়। একটি দ্রব্যের বিদ্যমান পরিমাণ চাহিদা রেখায় দাম বিন্দুতে দাম নির্দেশিত হবে বা দ্রব্যের সেই পরিমাণে ভোক্তার প্রান্তিক উপযোগ নির্দেশিত হবে। ইহা দ্রব্যটির উল্লিখিত পরিমাণে কি পরিমাণ খরচ করতে প্রস্তুত আছে তা পরিমাপ করে। যোগান রেখায় দাম বিন্দু প্রান্তিক খরচ নির্ণয় করে অর্থাৎ সেই পরিমাণ দ্রব্য উৎপাদনে উৎপাদকের মোট ব্যয় বৃদ্ধি নির্ণয় করে। চাহিদা ও যোগান ভারসাম্য দাম নির্ধারণ করে। একটি পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারে চাহিদা ও যোগান ভারসাম্য অবস্থায় উৎপাদন খরচ ও দাম সমান করে। চাহিদা ও যোগান উৎপাদনের উপাদানের মধ্যে আয়ের বণ্টন তত্ত্বে ব্যবহার করা হয়, যেখানে বাজার উপাদানের মাধ্যমে শ্রম ও বিনিয়োগকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। শ্রম বাজারের উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, নিয়োগকৃত শ্রমিকের পরিমাণ ও শ্রমের দাম শ্রমের চাহিদা (উৎপাদকের ক্ষেত্রে) এবং শ্রমের সরবরাহ (শ্রমিকের ক্ষেত্রে) নির্ধারণ করবে। চাহিদা ও যোগান পূর্ণ প্রতিযোগিতামূলক বাজারের আচরণ ব্যাখ্যা করে, কিন্তু বিভিন্ন প্রকার বাজারের কার্যক্রম বৃদ্ধির জন্য ইহার প্রয়োজনীয়তা আদর্শ হিসেবে কাজ করে। চাহিদা ও যোগান বাজার অর্থনীতিতে সামষ্টিক অর্থনীতির চলকসমূহ ব্যাখ্যাও করে, যেমন দ্রব্যের মোট পরিমাণ ও সাধারণ মূল্যস্তর। মূল্য ও পরিমাণ চাহিদা ও যোগান বিশ্লেষনে দাম (দ্রব্য বিনিময়ের হার) উৎপাদন ও ভোগের মধ্যে সমন্বয় সাধন করে। দাম ও পরিমাণকে বাজার ব্যবস্থা উন্নয়নের জন্য সবচাইতে বেশি প্রতক্ষ পর্যবেক্ষণ চলক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। যোগান, চাহিদা ও বাজার ভারসাম্য তত্ত্বভাবে দাম ও দ্রব্যের পরিমাণের সহিত সম্পর্কযুক্ত। কিন্তু দাম ও চাহিদা পরিবর্তনের পরিমাপে উপাদানের প্রভাব নির্ণয় করা হয়—তাদের মাধ্যমে, দাম ও পরিমাণ—ফলিত ব্যষ্টিক অর্থনীতি ও সামষ্টিক অর্থনীতিতে আদর্শ চলক হিসেবে ব্যবহার করা হয়। অর্থনৈতিক তত্ত্বসমুহ বিদ্যমান পরিমাণে দাম কি হবে তা নির্ধারণ করে। বাস্তবিকপক্ষে, দাম ও পরিমাণের পরিবর্তনের ফলে যোগান ও চাহিদা কতটুকু পরিবর্তন হবে তা নির্ণয় করার চেষ্টা করা হয়। চাহিদা ও যোগান তত্ত্ব ভারসাম্য নির্ণয় করে কিন্তু চাহিদা ও যোগানের পরিবর্তনে ভারসাম্য কি গতিতে পরিবর্তিত হয়ে তা নির্ধারিত হবে তা পারেনা। অনেক ক্ষেত্রে, 'দামের স্থিরতা' এর বিভিন্ন কাঠামো দামের চাইতে চাহিদা ও যোগানের পরিবর্তনে স্বল্পকালে দ্রব্যের পরিমাণ নির্ধারণে অগ্রণী ভুমিকা পালন করে। ইহা সামষ্টিক অর্থনীতিতে বাণিজ্য চক্র বিশ্লেষনে অন্তর্ভুক্ত করা হয়। দাম স্থিরতার প্রভাব সমাধানে কখনও কখনও বিশ্লেষন করা হয় এবং দীর্ঘমেয়াদী ভারসাম্যের অনূসিদ্ধান্ত ইহা প্রতিবন্ধকতা হিসাবে ধরা হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে,একটি বাজারের দাম স্থিরতা শ্রম বাজারের শ্রম হারকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং পূর্নপ্রতিযোগিতা মূলক বাজার থেকে ঐ বাজারে সরবরাহ করে। অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রে সকল সামাজিক ব্যয় ও মুনাফা গণনা করার জন্য বাজার বিশ্লেষন করা হয়। কখনও কখনও বাহ্যিকতা শব্দটি উৎপাদন ও ভোগ হতে সামাজিক ব্যয় ও মুনাফা সৃষ্টির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় যা বাজার মূল্য থেকে প্রতিফলিত হয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, বায়ু দূষন ঋনাত্বক বাহ্যিকতা সৃষ্টি করে এবং শিক্ষা ধনাত্বক বাহ্যিকতা সৃষ্টি করে। দ্রব্য বিক্রিয়ে সরকারী কর এবং অন্যান্য প্রতিবন্ধক সমূহ ঋনাত্বক বাহ্যিকতা এবং ভূর্তকি ও অন্যান্য সূবিধা সমুহ দ্রব্য ক্রয়ের ক্ষেত্রে ধনাত্বক বাহ্যিকতা সৃষ্টি করে সঠিক দাম নির্ধারণের চেষ্টা করা হয়। প্রান্তিকতা কোনো নির্দিষ্ট সময়ে ঐ দ্রব্য বা সেবার অতিরিক্ত এক একক ভোগের দরুন মোট উপযোগের যে বৃদ্ধি হয় তা বোঝানো তাকে প্রান্তিকতা বলা হয়ে থাকে। প্রান্তিক অর্থনৈতিক তত্ত্বে আয় ও সম্পদকে প্রতিবন্ধক বিষয় ধরে ভোক্তা অধিক পছন্দ অবস্থানে পৌঁছতে চেষ্টা করে, তা নিয়ে বিশ্লেষণ করা হয়। ইহা উৎপাদক তাদের নিজস্ব প্রতিবন্ধক (ভালো পণ্যের চাহিদা, প্রযুক্তি এবং উপাদান মূল্য)-কে বিষয় ধরে মুনাফা সর্বোচ্চ করতে চেষ্টা করে, তা নিয়েও আলোচনা করে। তাই একজন ভোক্তার একটি দ্রব্যের দামের বিপরীতে প্রান্তিক উপযোগ যখন শূন্য হয়, সেই বিন্দুতে ঐ ভোগ্যপণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধি থেমে যায়। একইভাবে একজন উৎপাদক প্রান্তিক আয় ও প্রান্তিক ব্যয় তুলনা করে, যাকে প্রান্তিক মুনাফা বলা হয়। যে বিন্দুতে প্রান্তিক মুনাফা শূন্য হয় সেখানে উৎপাদন বৃদ্ধি থেমে যায়। ভারসাম্যের দিকে গমন ও ভারসাম্যের মধ্যে পরিবর্তনের ফলে প্রান্তিক বিন্দুসমূহও পরিবর্তিত হয়, তা কখনও কম-বেশি হতে পারে আবার নাও হতে পারে। যেকোন অর্থনৈতিক প্রক্রিয়ায় যেখানে দুষ্প্রাপ্যতা বিদ্যমান সম্পর্কযুক্ত শর্তসমূহ ও বিবেচ্য বিষয়সমূহ সাধারণ ভাবেই প্রয়োগ করা হয়, তা বাজার নির্ভর হোক কিংবা না হোক। দুষ্প্রাপ্যতা বলতে উৎপাদন যোগ্য বা বিনিময় যোগ্য দ্রব্যের পরিমাণ যা প্রয়োজনীয় উৎপাদনে প্রয়োজন কিংবা প্রত্যাশিত। উৎপাদনের ক্ষেত্রে এ ধরনের প্রতিবন্ধকতা এক ধরনের শর্তের ধরন যা বিদ্যমান নির্দিষ্ট সম্পদের করনে তৈরি হয়। এ ধরনের সম্পদ প্রতিবন্ধকতা গুলো উৎপাদন সম্ভাবনার তালিকা হিসেবে বর্ণনা করা হয়। ভোক্তা বা অন্য প্রতিনিধির ক্ষেত্রে যদি সম্পদের পূর্ণ ব্যবহার করা হয় উৎপাদন সম্ভাবনা ও দুষ্প্রাপ্যতার ব্যবধান কমে আসবে, যেমন আয়ের ক্ষেত্রে বেকার সময়, সরকারী পণ্যের জন্য বেসরকারী পণ্য, ভবিষ্যৎ ভোগের জন্য বর্তমান ভোগ। প্রান্তিকতাবাদীরা বাণিজ্য-বন্ধ অবস্থাকে পরিমাপের ক্ষেত্রে সূযোগ ব্যয় এর কথা উল্লেখ করেছেন। এ ধরনের ব্যয়সমূহ বাজার অর্থনীতিতে দামের প্রতিপফলন ঘটায় এবং বাজার অর্থনীতিতে অর্থনৈতিক দক্ষতা বিশ্লেষণে বা বণ্টন ব্যবস্থা পূর্বনির্ধারিত করতে ব্যবহার করা হয়। একটি কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা গ্রহণকারী অর্থনীতিতে তুলনামূলক ছায়া-মূল্য সম্পর্ক উৎপাদন লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছতে সম্পদের ব্যবহারের দক্ষতা অবশ্যই পরিপূর্ণ করতে হবে। এ ধরনের পরিস্থিতিতে প্রান্তিকতাবাদ বিভিন্ন পদ্ধতিতে হাতিয়ার হিসেবে শুধুমাত্র ভোক্তা বা বাজারের ক্ষেত্রেই ব্যবহার হয়না, এমনকি ভিন্ন অর্থনৈতিক প্রক্রিয়া এবং আয়ের বৃহৎ বণ্টন ব্যবস্থায় চলক সমূহের সাথে সম্পর্ক ও তাদের প্রভাব নির্ণয়ের ক্ষেত্রেও ব্যবহৃত হয়। অর্থনৈতিক সমস্যাসমূহ অর্থনৈতিক সমস্যা বলতে মূলত স্বল্পতা এবং বাছাই বা নির্বাচনের সমস্যা কী বোঝায়। একটি অভাব পূরণ হলেই নতুন নতুন অভাব দেখা যায়। মানুষের অভাব যেমন অসীম তেমনি সম্পদ যদি অসীম হতো তাহলে অর্থনৈতিক সমস্যার উদ্ভব হত না। কিন্তু মানুষের অভাব অসীম হলেও অভাব পূরণের উপকরণ বা সম্পদ সসীম। এই সম্পদ দ্বারা মানুষের সকল অভাব একসঙ্গে পূরণ করা যায় না। বস্তুত সম্পদের স্বল্পতা বা দুষ্প্রাপ্যতা হল মানুষের মৌলিক অর্থনৈতিক সমস্যা। অধ্যাপক রবিনসনের মতে, “সম্পদ সসীম হলেও তা বিকল্প ব্যবহারযোগ্য” অর্থাৎ একই সম্পদ বিভিন্ন অভাব পূরণে ব্যবহার করা যায়। যেমন একখণ্ড জমিতে ধান অথবা পাট উৎপাদন করা যায়। সম্পদের এরূপ বিকল্প ব্যবহার যোগ্য তার কারণেই মানুষ বিভিন্ন অভাবের মধ্যে নির্বাচন করতে হয়। বিকল্প ব্যবহারযোগ্য অপ্রচুর উপকরণ গুলো এমনভাবে নিয়োগ করতে হবে যাতে অধিকতর প্রয়োজনীয় অভাব গুলোকে পূরণ করা সম্ভব হয়। মানুষের সকল অভাব এর গুরুত্ব একরকম নয়। কোনটির গুরুত্ব বেশি, কোনটির গুরুত্ব অপেক্ষাকৃত কম। আবার, উপকরণগুলোর বিকল্প ব্যবহার সর্বক্ষেত্রে এরূপ ফল দেয় না। একই উপকরণের একপ্রকার ব্যবহার অপেক্ষা আর এক প্রকার ব্যবহারের অধিকতর ফল পাওয়া যেতে পারে। কিন্তু কোন উপকরণ একই সাথে একাধিক ব্যবহার নিয়োগ করা যায় না। কোন উপকারও দ্বারা একটি উদ্দেশ্য পূরণ করতে হলে উন্নয়নের সাথে অন্য একটি উদ্দেশ্য ত্যাগ করতে হয়। এজন্যই সীমিত সম্পদ দ্বারা অসীম অভাব পূরণের ক্ষেত্রে বাছাই বা নির্বাচন করতে হয়। ইতিহাস ও অর্থনৈতিক স্কুলসমূহ প্রারম্ভিক অর্থনৈতিক চিন্তাধারা প্রাচীন অর্থনীতিতে চিন্তাধারা মেসোপটেমিয়া, গ্রিক, রোমাক, ভারতীয়, চৈনিক, পারস্য এবং আরব সভ্যতার সমসাময়িক। অর্থনৈতিক চিন্তা-ভাবনার প্রাচিন লেখকবৃন্দের মধ্যে রয়েছেন অ্যারিস্টটল, চানক্য, কিন সি হুয়াং, টমাস একুইনাস, ইবনে খালদুন প্রমুখ। জোসেফ সুম্পেটার ১৪শ শতক থেকে ১৭শ শতকের মধ্যে সময়কালকালের বিজ্ঞ ব্যক্তিদের বিবেচনা করেছেন "আগত অন্যান্য পক্ষের চাইতে বেশি নিকস্থ বৈজ্ঞানিক অর্থনীতির প্রতিষ্ঠাতা" হিসেবে যেমন প্রাকৃতিক নিয়মের সাথে আর্থিক, সুদের হার এবং মূল্যতত্ত্ব উদ্ভাবন। ইবনে খালদুনের আল মুকাদ্দিমাহ আবিষ্কারের পরে সুম্পেটার ইবনে খালদুনকে আধুনিক অর্থনীতির সবচাইতে নিকটস্থ বিশেষজ্ঞ হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। তবে তার অনেকগুলো অর্থনৈতিক তত্ত্ব অদ্যাবধি ইউরোপে অপরিচিত। অন্য দুটি পক্ষ যাদের পরবর্তীতে 'বাণিজ্যবাদী' ও 'বাস্তববাদী' নামে অভিহিত করা হয় এবং এরা অর্থনীতির অবশিষ্ট উন্নয়নে প্রত্যক্ষ প্রভাব রাখেন। উভয় পক্ষই ইউরোপে অর্থনৈতিক জাতীয়তাবাদ ও আধুনিক পুঁজিবাদ উত্থানের সাথে একমত প্রকাশ করেন। বাণিজ্যবাদ (মার্কেনটাইলিজম) যা উৎপাদনমূলক নীতিগত সাহিত্যে অর্থনৈতিক মূলনীতি হিসেবে ১৬শ শতক থেকে ১৮শ শতক পর্যন্ত পরিচিত ছিল। এই মতবাদে একটি জাতির সম্পদ নির্ভর করে তাদের সংগৃহীত স্বর্ণ ও রৌপ্যের ওপর। একটি জাতি খনি থেকে না হলেও বিদেশে পণ্য রপ্তানী এবং স্বর্ণ ও রৌপ্য ব্যতীত অন্য পণ্য আমদানীর উপর প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে স্বর্ণ ও রৌপ্য সংগ্রহ করতে পারে। এই মূলনীতিতে রপ্তানীযোগ্য পণ্য তৈরির জন্য সস্তা কাঁচামাল আমদানী এবং রাষ্ট্রীয় নীতিতে বৈদেশিক পণ্যের ওপর শুল্ক আরোপ ও উপনিবেশগুলোতে উৎপাদন বন্ধ করার নীতিকে উৎসাহিত করা হয়। ১৮ শতকের একদল চিন্তাবিদ ও লেখক আয় এবং উৎপাদনের চক্রাকার প্রবাহের মাধ্যমে অর্থনৈতিক চিন্তাধারার উন্নয়ন ঘটান। অ্যাডাম স্মীথ তাদের প্রক্রিয়াকে সম্পূর্ণরূপে ভুল বলে ব্যাখ্যা করেন যদিও সেগুলো এখনও অর্থনীতিতে ব্যবহৃত হচ্ছে। তাদের মতে, একমাত্র কৃষি উৎপাদনই খরচের বেশি মুনাফা বয়ে আনতে পারে; সুতরাং কৃষির ওপরই সম্পদের বিষয়টি নির্ভরশীল। তাই, তারা উৎপাদন বৃদ্ধি ও শুল্ক আরোপ মতবাদে বিশ্বাসী বাণিজ্যবাদীদের বিরোধিতা করেন। তারা কর সংগ্রহের প্রশাসনিক ব্যয়বহূল ব্যবস্থা থেকে ভূমি মালিকদের কাছ থেকে রাজস্ব সংগ্রহের পরামর্শ দেন। সমসাময়িক অর্থনীতিবিদগণ ভূমি কর-এর প্রকারভেদকে রাজস্ব করের গঠনমূলক উৎস হিসেবে উল্লেখ করেন। বাণিজ্যবাদীদের বাণিজ্য নীতির প্রতিক্রিয়ায় লেইসেজ-ফেয়ার নীতি সমর্থন করেন, যাকে অর্থনীতিতে ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপ বলে গণ্য করা হয়। বুনিয়াদী অর্থনীতি ১৭৭৬ সালে এ্যাডাম স্মীথের “The Wealth of Nations” গ্রন্থটি প্রকাশিত হওয়ার পর অর্থনীতি একটি আলাদা বিষয় হিসেবে কার্যকরী ভাবে প্রচলিত হয় বলে বর্ণনা করা হয়। এই বইটিতে উৎপাদনের উপাদান হিসেবে ভূমি, শ্রম ও পুঁজিকে নির্ধারণ এবং জাতীয় সম্পদের মূল বণ্টন নিয়ে আলোচনা করা হয়।স্মীথের দৃষ্টিতে আদর্শ অর্থনীতি হচ্ছে একটি স্ব-চালিত বাজার প্রক্রিয়া যা সয়ংক্রিয়ভাবে জনগনের অর্থনৈতিক চাহিদা মেটায়। তিনি বাজার প্রক্রিয়াকে “অদৃশ্য হাত” বলে বর্ণনা করেন যা প্রতিটি চলককে তাদের স্ব-ইচ্ছায় পরিচালিত করে এবং সমাজের জন্য বৃহৎ মূনাফা বয়ে আনে। এ্যাডাম স্মীথ “লেইসেজ ফেয়ার” নীতি সহ আদর্শবাদী ধারণা সমূহের সমন্বয় ঘটান কিন্তু একমাত্র কৃষি উ ৎপাদনশীল ধারণা প্রত্যাখান করেন। তার বিখ্যাত “অদৃশ্য-হাত” দর্শনে স্মীথ যুক্তি দেখান যে, প্রতিযোগিতামূলক বাজার সামাজিক মূনাফার অগ্রগামী প্রান্তের দিকে ধাবিত হয় যদিও ইহা নিম্নমূখী মূনাফার দিকে ধাবিত করে। সাধারণভাবে স্মীথ একে রাজনৈতিক অর্থনীতি ও পরে বুনিয়াদী অর্থনীতি নামকরণ করেন। ১৭৭০ সাল থেকে ১৮৭০ সাল পর্যন্ত উল্লেখযোগ্য লেখকগন হচ্ছেন থমাস মালথাস, ডেভিড রিকার্ডো এবং জন ষ্টুয়ার্ট মিল। যখন এ্যাডাম স্মীথ আয়ের উৎপাদন নিয়ে গবেষণা করছিলেন, তখন ডেভিড রিকার্ডো ভূমি মালিক, শ্রমিক ও পুঁজির মধ্যে আয়ের বণ্টন বিষয়ে ব্যাখ্যা দেন। রিকার্ডো ভূমি মালিক একদিকে এবং অন্যদিকে শ্রম ও পুঁজির মধ্যে বৈপরীত্য লক্ষ্য করেন। তিনি লক্ষ্য করেন যে, নির্দিষ্ট ভুমির পরিমাণের বিপরীতে জনসংখ্যা ও পুঁজির বিপরীতে খাজনা বৃদ্ধি পায় এবং শ্রমিকের বেতন ও মূনাফা হ্রাস পায়। থমাস রবার্ট ম্যালথাস নিম্ন জীবনযাত্রার নিম্নমূখীতার ধারণাকে ব্যবহার করেন। তা যুক্তিতে জনসংখ্যা বৃদ্ধি পায় জ্যামিতিক হারে কিন্তু খাদ্য উৎপাদন বৃদ্ধি পায় গাণিতিক হারে। তার মতে, শ্রমিকের প্রাপ্য কমে তার করন নির্দিষ্ট জমির বিপরীতে জনসংখ্যা অধিক হারে বৃদ্ধি পায়। এর ফলে শ্রমিকের বেতন কমতে থাকে যা জনগনের জীবনযাত্রার মান নিয়ন্ত্রণ করে। ম্যালথাস বাজার অর্থনীতিতে পূর্ননিয়োগের স্বয়ংক্রিয় প্রক্রিয়ার সমালোচনা করেন। তিনি অর্থনৈতিক গতিধারার উপর অপূর্ননিয়োগের প্রভাব কম এবং ১৯৩০ সালের জন মায়নার্ড কেইন্স কর্তৃক ব্যবহৃত একটি ধারণা দেন। বুনিয়াদী অর্থনীতির শেষের দিকে জন স্টুয়ার্ট মিল বাজার প্রক্রিয়ার সৃষ্ট বণ্টন ব্যবস্থার অত্যাবশকীয় বিষয় সমূহ নিয়ে পূর্ববর্তী বুনিয়াদী অর্থনীতিবিদদের সহিত অংশগ্রহণ করেন। মিল বাজার ব্যবস্থার দুটি মূলনীতির পার্থক্য নিয়ে উল্লেখ করেনঃ সম্পদের শ্রেণিবিভাগ ও আয়ের বণ্টন। বাজারকে অবশ্যই সম্পদের সুসম বণ্টন করতে হবে কিন্তু আয়ের বণ্টন নয়। তিনি বলেন, ইহা সমাজের জন্য সময়োপযোগী হতে হবে। বুনিয়াদী তত্ত্বসমুহের মধ্যে মূল্য তত্ত্ব গুরুত্ত্বপূর্ন। স্মীথ লেখেন যে, “real price of every thing ... is the toil and trouble of acquiring it" যা দূস্প্রাপ্যতা থেকে সৃষ্ট হয়। স্মীথের মতে, জমির খাজনা ও মূনাফার সাথে শ্রমের মূল্যের মত অন্যান্য খরচও পণ্যের মূল্যের সহিত যুক্ত হয়। অন্যান্য বুনিয়াদী অর্থনীতিবিদ গণ স্মীথের মতামতে বিভিন্নতা লক্ষ্য করে ‘মুল্যের শ্রম তত্ত্ব’ নামে একটি তত্ত্ব দেন। বুনিয়াদী অর্থনীতিতে বাজার দীর্ঘ মেয়াদী ভারসাম্যের দিকে ধাবিত হয় বলে নির্ধারণ করা হয়। মার্ক্সীয় অর্থনীতি জার্মান অর্থনীতিবিদ কার্ল মার্ক্স-এর রচনার ভিত্ততে অর্থনৈতিক চিন্তাধারার মার্ক্সীয় চিন্তাভঙ্গির উৎপত্তি হয়। বুনিয়াদী অর্থনীতির চিন্তাধারায় মার্ক্সীয় অর্থনীতির আগমন একটি যুগস্রষ্টা ঘটনা। কার্ল মার্ক্সের কাজের মাধ্যমেই ইহা পরিচালিত হয়। তার মূল্যবান কাজের মধ্যে “Capital” এর প্রথম খন্ড ১৮৬৭ খ্রীষ্টাব্দে জার্মানীতে প্রকাশিত হয়। এই খণ্ডে তিনি ‘মূল্যের শ্রম তত্ত্ব’ এবং পুঁজির দ্বারা শ্রম ব্যবহারে তার চিন্তাধারা নিয়ে আলোচনা করেন। তাই, পুঁজিবাদী সমাজে শ্রম ব্যবহার পরিমাপে সাধারণ মূল্য তত্ত্ব থেকে ‘মূল্যের শ্রম তত্ত্ব’ বেশি কার্যকরী যদিও রাজনৈতিক অর্থনীতিতে এটি ঊহ্য রাখা হয়। নব্য বুনিয়াদী অর্থনীতি ১৮৭০ খ্রীষ্টাব্দ থেকে ১৯১০ খ্রীষ্টাব্দ পর্যন্ত কিছু তত্ত্বের সমষ্টি হিসেবে ‘নব্য বুনিয়াদী অর্থনীতি’ বা ‘প্রান্তিক অর্থনীতি’ গড়ে উঠে।নব্য বুনিয়াদী অর্থনীতিবিদ আলফ্রেড মার্শালের মাধ্যমে ‘অর্থনীতি’ শব্দটি জনপ্রিয়তা লাভ করে, যা পূর্বে ‘রাজনৈতিক অর্থনীতি’ নামে পরিচিত ছিল। নব্য বুনিয়াদী অর্থনীতি বাজার ভারসাম্যে দাম ও পরিমাণের যুগ্ম নির্নায়ক হিসেবে চাহিদা ও যোগানকে প্রক্রিয়া করন করে, যা উৎপাদিত পণ্য শ্রেণিবিন্যাস ও আয়ের বণ্টনকে প্রভাবিত করে। ইহা চাহিদার ক্ষেত্রে মুল্যের প্রান্তিক উপযোগ তত্ত্বের সমর্থনে বুনিয়াদী অর্থনীতি থেকে মুল্যের শ্রম তত্ত্ব এবং যোগানের দিক হতে আরও সাধারণ ব্যয় তত্ত্ব বিশ্লেষন করে। ব্যষ্টিক অর্থনীতিতে সিদ্ধান্ত গ্রহণে নব্য বুনিয়াদী অর্থনীতি মূনাফা ও ব্যয় নির্ধারণ করে বিশাল অবদান রেখেছে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, ব্যক্তিগত চাহিদার ‘ভোগ তত্ত্ব’ কীভাবে দাম এবং আয় পরিমাণগত চাহিদা উপর প্রভাব ফেলে তা পৃথকীকরন করে। সামষ্টিক অর্থনীতিতে ইহা তড়িৎ প্রতিফলিত হয় এবং কেন্সীয়ান সামষ্টিক অর্থনীতির সহিৎ নব্য বুনিয়াদী মূলনীতি স্থায়িত্ত্ব হয়। নব্য বুনিয়াদী অর্থনীতি কখনও কখনও ধর্মীয় অর্থনীতিকে অণুসরন করে যখন ইহা সমালোচনা কিংবা সহানুভুতির সম্মুক্ষীন হয়। আধুনিক ‘মেইনষ্ট্রীম অর্থনীতি’ গঠিত হয় নব্য বুনিয়াদী অর্থনীতি থেকে কিন্তু অনেক বাছাই প্রক্রিয়ায় দেখা যায় যে, ইহা পূর্বের বিশ্লেষনের খন্ড বা উৎঘাটিত যেমন ইকোনোমেট্রিক্স, ক্রীড়া তত্ত্ব, বাজার ব্যর্থতার বিশ্লেষন ও অপূর্ন প্রতিযোগিতা এবং জাতীয় আয়ের প্রভাবক দীর্ঘমেয়াদী চলক সমূহ বিশ্লেষনে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির নব্য বুনিয়াদী মডেল। কেন্সীয় অর্থনীতি কেন্সীয় অর্থনীতি জন মেনার্ড কেইন্স-এর, বিশেষ করে তার বই ‘The General Theory of Employment, Interest and Money’ (1936), এর মাধ্যমে সৃষ্ট, যা ১৯৩০-এর অর্থনৈতিক মহামন্দা-র প্রেক্ষাপটে সামষ্টিক অর্থনীতিকে একটি বিশেষ তত্বের সূচনা করে। কেন্সীয় অর্থনীতি মূল প্রস্তাব অর্থনৈতিক মন্দা নিরসনার্থে সরকারের তরফে সম্প্রসারণমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ। বইটি স্বল্প কালে যেখানে মূল্য সম্পর্কযুক্তভাবে অবাধ সেখানে জাতীয় আয়ের নিণায়ক নির্ধারণের উপর বিষয়ের প্রতিফলিত করে। নিম্ন সক্রিয় চাহিদার কারণে শ্রম বাজারে উচ্চ বেকারত্ব অবশ্যই নিবারণ হবেনা এবং কখনও মূল্য গ্রহণযোগ্যতা ও আর্থিক নীতি অকার্যকর হয় কেন কেইন্স তা বৃহৎ আকারে তাত্ত্বিক বিশ্লেষনের চেষ্টা করেছেন। তাই অর্থনৈতিক বিশ্লেষনণ প্রভাবিত করনের ক্ষেত্রে এই বইটিকে বিপ্লব বলে আখ্যায়িত করা হয়। কেইন্সিয়ান অর্থনীতির দুইটি সাফল্য উল্লেখযোগ্য। কেইন্সিয়ান-পরবর্তী অর্থনীতিতে সামষ্টিক অর্থনীতির চলক সমূহ ও প্রক্রিয়া সমন্বয়ের উপর জোড় দেওয়া হয়। তাদের মডেল গুলোর জন্য ব্যষ্টিক কাঠামোর বিশ্লেষনে সরল সর্বোচ্চকরন মডেল থেকে বাস্তব জীবন অভ্যাস বেশি মূলভিত্তি হিসেবে ধরা হয়। ইহা সাধারণত ক্যামব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় ও জন রবিনসনের কাজের সাথে সম্পর্কযুক্ত। নব্য কেইন্সিয়ান অর্থনীতিও কেইন্সিয়ান প্রথা উন্নয়নের সাথে সম্পর্কযুক্ত। এই গ্রুপের গবেষক গণ ব্যষ্টিক কাঠামোতে ব্যবহৃত মডেল সমূহ ও আচরণ উন্নয়নে অন্য অর্থনীতিবিদদের সহিত প্রচেষ্টা ভাগাভাগি করতেন কিন্তু আদর্শ কেইন্সিয়ান প্রতিচ্ছবির নিম্ন প্রতিফলন যেমন দাম ও শ্রমিকের বেতনের অস্থিতিস্থাপকতা ইত্যাদির কারণে তা এগোতে পারেনি। এগুলো স্বাভাবিকভাবে তৈরি করা হয় মডেলসমূহের কেন্দ্রীয় বৈশিষ্টের জন্য যতটা না কেইন্সিয়ান-অভিব্যক্তির জন্য সাধারণ অণুমিত শর্তের জন্য। অন্যান্য ঘরানা ও ধারণাস্রোত অন্যান্য সু-পরিচিত স্কুল বা ধারণার প্রকৃতি সমুহ বিশেষ করে অর্থনীতির বিশেষ ক্ষেত্রে গবেষণা ও যেসব বিশ্বব্যপী পরিচিত ছড়িয়ে থাকা প্রাতিষ্ঠানিক গ্রুপ সমুহ হচ্ছে অষ্ট্রেলিয়ান স্কুল, শিকাগো স্কুল, ফ্রেইবুর্গ স্কুল, লাউসান্নে স্কুল ও স্টকহম স্কুল। সামষ্টিক অর্থনীতি প্রতিফলিত হয়েছে যাদের সাহিত্যেঃ বুনিয়াদি অর্থনীতি, কেইন্সিয়ান অর্থনীতি, নব্য কেইন্সিয়ান চিন্তাধারা, কেইন্সিয়ান-পরবর্তী অর্থনীতি, আর্থিক অর্থনীতি, নব্য বুনিয়াদি অর্থনীতি এবং যোগান-ভিত্তিক অর্থনীতি।নতুন বিকল্প উন্নয়ন হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়ঃ পরিবেশ অর্থনীতি, পরিবর্তন সম্পর্কিত অর্থনীতি, নির্ভরশীলতা অর্থনীতি, কাঠামোগত অর্থনীতি এবং বিশ্ব প্রক্রিয়া তত্ত্ব। অর্থনীতির ঐতিহাসিক সংজ্ঞার্থসমূহ এই বিষয়টি প্রবন্ধের প্রথমে আলোচনা করা হয়েছে। সম্পদের সংজ্ঞা সম্পদকে বৃহৎ পরিসরে সংজ্ঞায়িত করার সাথে ডেভিড হিউম ও এডাম স্মিথ কর্মের রাজনৈতিক অর্থনীতির প্রাথমিক আলোচনা সম্পর্কযুক্ত। হিউম যুক্তি দেন যে, উৎপাদন বৃদ্ধি ব্যতীত অতিরিক্ত স্বর্ণ মূল্য বৃদ্ধি করতে পারে। স্মিথ অবশ্য প্রকৃত সম্পদ বলতে বোঝান যে, অতিরিক্ত স্বর্ণ ও রৌপ্য নয়, সমাজে শ্রম ও ভূমির বার্ষিক উৎপাদনই সম্পদ। জন স্টুয়ার্ট মিল অর্থনীতিকে সংজ্ঞায়িত করেন এভাবে , "the practical science of production and distribution of wealth" অর্থাৎ অর্থনীতি হচ্ছে উৎপাদন ও সম্পদ বণ্টনের ব্যবহারিক বিজ্ঞান। এই সংজ্ঞাটি Concise Oxford English Dictionary কর্তৃক গৃহীত হয়েছে এমনকি ভোগের মূলনীতিও এর অন্তর্ভুক্ত হয়নি। মিলের কাছে সম্পদ হচ্ছে গুরুত্বপূর্ণ জিনিসের ভান্ডার। সম্পদকে সংজ্ঞায়িত করার ক্ষেত্রে উৎপাদন ও ভোগের উপর বেশি গুরুত্বারোপ করা হয়েছে। এই গুরুত্বারোপকে সমালোচকরা মানুষকে নেপথ্য ভুমিকায় রেখে সম্পদের উপর বেশি আলোকপাত করা হয়েছে বলে সমালোচনা করেছেন। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, জন রাস্কিন রাজনৈতিক অর্থনীতিকে ধনীদের বিজ্ঞান ও জারজ বিজ্ঞান বলে আখ্যায়িত করেছেন। কল্যাণ সংজ্ঞা পরবর্তী দীর্ঘ সময়ে মানুষ, মানবীয় কার্যাবলী ও মানব কল্যাণের বিষয়টি সংঙ্গার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে থাকে, যতটা না সম্পদ অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৮৯০ সালে আলফ্রেড মার্শাল তার ‘Principles of Economics’ বইয়ে লিখেন যে, "Political Economy or Economics is a study of mankind in the ordinary business of Life; it examines that part of the individual and social action which is most closely connected with the attainment and with the use of material requisites of well-being." অর্থাৎ রাজনৈতিক অর্থনীতি বা অর্থনীতি হচ্ছে মানবিক জীবন যাপনের অধ্যয়ন; ইহা ব্যক্তি ও সামাজিক কর্মকাণ্ডের অংশ বিশেষ অংশ বিশ্লেষন করে যা প্রাপ্য ও বস্তুগত উন্নয়নে ব্যবহৃত জিনিসের সাথে ঘনিষ্ঠ ভাবে সম্পর্কযুক্ত। অর্থনীতি কি একটি বিজ্ঞান? বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এতে বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়, এর অনুসিদ্ধান্ত প্রতিষ্ঠা ও ভবিষ্যৎ বাণী করতে পারে যার উপাত্ত সমূহ পরীক্ষা করা যায় এবং যেখানে একই শর্তের বিপরীতে ফলাফল প্রতিবার একই আসবে। অর্থনৈতিক পরীক্ষার বেশ কিছু ফলিত ক্ষেত্র সমুহে পরিচালনায়ঃ পরীক্ষামুলক অর্থনীতি ও ভোক্তার আচরণ, পরীক্ষায় মানবীয় বিষয়ের আলোকপাত; এবং ইকোনোমেট্রিক্সের শাখা সমুহ নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষার মাধ্যমে অনুপস্থিত উপাত্তের পরীক্ষায় আলোকপাত অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কখনও কখনও একই বিষয়ে অন্যান্য সামাজিক বিজ্ঞানে কি বলা হচ্ছে অর্থনীতিবিদদের জন্য মানবীয় বিষয় সংশ্লিষ্ট আদর্শ ও ব্যবহারিক সংক্রান্ত নিয়মিত পরীক্ষা করা কঠিন হয়ে পড়ে। সামাজিক বিজ্ঞান হচ্ছে পর্যবেক্ষণমুলক বিজ্ঞান বা কখনও বিজ্ঞান, ইহা বিংশ শতাব্দীর একটি বিতর্কের বিষয়। কিছু দার্শনিক ও বিজ্ঞানী বিশেষ করে কার্ল পপ্পার ঘোষণা করেন যে, পর্যবেক্ষণমূলক অণুসিদ্ধান্ত, অণুপাত বা তত্ত্বকে বৈজ্ঞানিক বলা যাবেনা যতক্ষন ইহা পর্যবেক্ষণে প্রত্যাখান, মিথ্যে প্রমাণিত হবেনা। সমালোচনা কারীরা অভিযোগ করেন যে, অর্থনীতি সবসময় সঠিক ফলাফল ধার্য করতে পারেনা, কিন্তু অর্থনীতিবিদগণ নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষার অনেক উদাহরণ দেন যে এগুলো পরীক্ষাগার ছাড়াই সঠিক সিদ্ধান্ত দিতে পারে। অর্থনীতিতে তত্ত্ব প্রতিষ্ঠা সামাজিক আচরণের পর্যবেক্ষণ সম্পর্কযুক্ত এবং অর্থনীতি অ-দৈহিক যুক্তির কারণে প্রাকৃতিক আইন বা চিরন্তন সত্য নয়। এটাই অর্থনীতিকে বিজ্ঞান হিসেবে আখ্যায়িত করাকে সমালোচিত করে। সাধারণত অর্থনীতিবিদ গণ কঠিন পরিস্থিতির বর্তমানে ই ঘটতে পারে তারই উত্তর দেন, ইকোনোমেট্রিক্স এর মত পরিসংখ্যানিক পদ্ধতি এবং বাস্তব জগতের উপাত্ত ব্যবহার করে অণুসিদ্ধান্ত পরীক্ষা করেননা। পরীক্ষামুলক অর্থনীতি গবেষণাগার কাঠামোয় অর্থনৈতিক তত্ত্ব সমুহের অন্তত কিছু ভবিষ্যদ্বাণী পরীক্ষার প্রচেষ্টা করে- যা ভেরন স্মিথ ও ডানিয়েল কানমানকে ২০০২ সালে Bank of Sweden Prize in Economic Sciences in Memory of Alfred Nobel পুরস্কার এনে দেয়। তবুও বিশ্লেষনের মাধ্যমে বিশ্বের সাথে অর্থনৈতিক মডেলের যোগাযোগ তৈরি করার ক্ষেত্রে অর্থনীতিবিদ ও অধ্যাপক ডিরড্রে ম্যকক্লোস্কি ‘ম্যকক্লোস্কি বিশ্লেষন’ এর মাধ্যমে ইকোনোমেট্রিক্সের[ অন্যান্য অধ্যাপকগণের মত মডেলের সারমর্ম প্রয়োগ প্রমাণিত ও অপ্রমাণিত করার জন্য কিছু উপাত্ত ব্যবহার করতে সমর্থ হন। তিনি যুক্তি দেন যে, বিশ্লেষনধর্মী সমীকরনের সম্প্রসারণে অর্থনীতি বিদদের বৃহৎ প্রচেষ্টা ব্যর্থ প্রচেষ্টা হয়ে থাকে। ইকোনোমেট্রিক্সবিদগণ উত্তর দেন যে, এটা শুধুমাত্র অর্থনীতি নয় বিজ্ঞানের বিরুদ্ধেও অভিযোগ। ম্যকক্লোস্কি জটিল বিশ্লেষনের সমালোচনায় বলা হয় যে, অন্যান্য জিনিসের সাথে অর্থনৈতিক বিশ্লেষন সারমর্ম ধর্মী এ ধরনের উদাহরণ তিনি এড়িয়ে গেছেন এবং তার অভিযোগ অযৌক্তিক। নোবেল প্রাইজ বিজয়ী ও দার্শনিক ফ্রেডরিক হায়েক বলেন যে, অর্থনীতি হচ্ছে একটি সামাজিক বিজ্ঞান, কিন্তু যুক্তি দেওয়া হচ্ছে দৈহিক বিজ্ঞানের মত পদ্ধতি অর্থনীতিতে ব্যবহার করা হলে তা ভুল ফলাফল বয়ে আনবে এবং একে অবৈজ্ঞানিক মনে করা হয় যখন যান্ত্রিক ও বিভিন্ন ক্ষেত্রের চিন্তাধারার আচরণের সরল বিষয় গঠিত হয়। কৌতুক করে অর্থনীতিকে “দূর্ভাগ্য বিজ্ঞান” বলা হয়। এতদ্বসত্তেও উনিশ শতকে তর্কযুক্তির মাধ্যমে ইহার সঠিক ভিত্তি গড়ে উঠে যদিও অর্থনীতি নামকরণ নিয়ে কটূক্তি করা হয়। অণুমিত শর্তের সমালোচনা অর্থনীতিতে অর্থনীতিবিদদের কর্তৃক কতিপয় মডেল ব্যবহৃত হওয়ায়, আবার কখনও অন্যান্য অর্থনীতিবিদ যারা অবাস্তবতার প্রতি বিশ্বস্ত, পর্যবেক্ষণ বিহীন বা পর্যালোচনা বিহীন অণুসিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে, ফলে ইহা সমালোচিত হয়। গুরুত্ত্বপূর্ন নয় এমন বিষয়ের ফলাফল থেকে গৃহীত অবাস্তব অণুসিদ্ধান্ত সমালোচনায় সাড়া মেলে এবং জটিলতা পূর্ণ বিশ্বে ইহার প্রয়োজন রয়েছে যা, অর্থনীতির দার্শনিক মতবাদের সহিৎ সামঞ্জস্যপুর্ন অবাস্তব অণুমিত শর্তের অধিক গ্রহণযোগ্য, কেননা এ ধরনের অণুমিত শর্ত অর্থনৈতিক জ্ঞানের জন্য অপরিহার্য। একটি গবেষণায় ইহাকে “গৃহীত প্রতিরক্ষা” নামে ব্যাখ্যা করা হয়েছে এবং সারমর্মে বলা হয়েছে এই “গৃহীত প্রতিরক্ষা” অবাস্তব অণুমানকে সমালোচনার অগ্রহণযোগ্য হয়না। কখনও কখনও ইহা গুরুত্ত্বপূর্ন যে, একটি স্কুলের বিষয়সমুহের মধ্যে ইহা অধিকতর বিবেচ্য, সেখানে সকল অর্থনৈতিক বিষয়কে বিবেচনায় নেওয়া হয় এবং অন্তর্নিহিত সত্য অণুধাবনে পর্যবেক্ষণমুলক-বিবেচনা অধিক বলে বহু সংখ্যক পরিবর্তক ক্ষেত্র অভিযোগ করে। অণুমিত শর্ত ও পর্যবেক্ষণ অর্থনীতির সমালোচনার অধিকাংশই এই ধারণার কেন্দ্রবিন্দুতে বিচরন করে যে, অর্থনীতির কাঠামোগত অভিযোগ গুলো পরীক্ষামূলক প্রমাণ ছাড়াই প্রশ্নাতীত অণুমান। অনেক অর্থনীতিবিদ এইসব ধারণার উদাহরণ দিয়ে প্রতিউত্তরে বলেছেন যে, অর্থনীতিতে ব্যবহারের জন্য “গৃহীত মূলনীতি” কে বিবেচনা করা হয়েছে এবং যা পরীক্ষামুলক পর্যবেক্ষণের সহিৎ সামঞ্জস্যপূর্ন ( নিম্নের তিনটি উদাহরণ দেখুন), কখনও কখনও একমত পোষন করেছেন যে, এই পর্যবেক্ষণ গুলোর মূল অণুমিত শর্ত মুলতঃ অধিক সরলতা সমস্যা সংবলিত। অনেক অর্থনীতিবিদ “অণুমিত শর্ত” থেকে পর্যবেক্ষণ মুলকে পরিবর্তিত হওয়া ধারণার উদাহরণ দিয়েছেন, তা নিম্নরুপঃ যৌক্তিকতা= নিজস্ব-পছন্দঃ ইহাকে একটি সাধারণ মূলনীতি হিসেবে গণ্য করা যায় এবং অনেক মেইনস্ট্রীম অর্থনীতিবিদ বিশ্বাস করেন যে, যৌক্তিকতা নিজস্ব-পছন্দ ও এধরনের বিষয়কে অন্তর্ভুক্ত করে।ইহা কখনও কখনও সুরক্ষিত নিঃস্বার্থপর মুলনীতি হয়না। নিঃস্বার্থপর মুলনীতি দেখা যায় যখন কেউ স্বপ্রনোদিত হয়ে অন্যের উপকার করে। অন্যরা অভিযোগ করে নিঃস্বার্থপর মুলনীতির জন্য অতিরিক্ত ছাড় দেওয়া যায়না এবং ইহা বিশ্বায়ন বিপদসঙ্কুল-অপরাধী এর চাইতে বেশি নিরুৎসাহিত করে। একজন যুক্তিযুক্ত ব্যক্তি যদি নিঃস্বার্থপর না হন, তাহলে অন্য ব্যক্তি চিরতরে স্বার্থপর হতে পারে। কখনও কখনও এই “গৃহীত মূলনীতি” বিভিন্ন পরীক্ষা এমনকি নিঃস্বার্থপর মুলনীতির বিষয়বস্তু হতে পারে, যখন সকল সামাজিক চাপ বিবেচিত হয়, কিংবা নিজস্ব-পছন্দের ধাঁচে প্রক্রিয়াকরন হয়। ......... আয় বৃদ্ধি প্রবণতা = ভোগঃ ইহাকে একটি গৃহীত মূলনীতি হিসেবে গণ্য করা যায় এবং অনেক মেইনস্ট্রীম অর্থনীতিবিদ ধারণা পোষন করেন যে, মানব জাতি ভোগে সুখী এবং ভোগ ব্যতীত অসুখী। সন্তুষ্ট করতে সমর্থ্য নয় এমন বিষয়ের অন্যান্য সাধারণ অণুমিত শর্ত যোগ করা যায় যা মানুষকে কখনও সূখী করতে পারেনা। যদিও মূল মতাদর্শ অধিক সরলতা সমস্যা যুক্ত ( বেশির ভাগ অর্থনীতিবিদদের প্রতনিধিগণ আজকের দিনে বিশ্বাস না করতেও পারেন), বর্তমানে পর্যবেক্ষণমুলক পরীক্ষা আয় বৃদ্ধি প্রবনতার ধারণা ও আয়ের এরকম উপাদানের সম্পর্ক নিশ্চিত করে। ......... স্বয়ংক্রিয়তাঃ কিছু মেইনস্ট্রীম অর্থনীতিবিদ ইহা নিয়ে ধারণা পোষন করেন যে, মানব জাতি আদর্শবাদী, তারা স্বাধীনতা পছন্দ করে। ইহা অর্থনীতি ও অর্থনীতিবিদদের বিশেষ কিছু ধারণার অন্য ধরনের সরলতা প্রকাশ করে। প্রতিনিধি নির্ভর মডেল তৈরি ও পরীক্ষামুলক অর্থনীতি ফলাফল দেয় যা এই তত্ত্বকে নির্দেশনা করে। গৃহীত মূলনীতির সাধারণ প্রতিরক্ষা হচ্ছে যে ইহা সমস্যার সমধান তৈরি করতে পারে। কখনও কখনও নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষায় অর্থনৈতিক গবেষণার মাধ্যমে বিশেষ পর্যবেক্ষণের পর মূল অণুমিত শর্ত সমুহ আরও বাছাই করা করা হয় এবং আদর্শবাদী অর্থনীতিতে কৌশলগত ভাবে “গৃহীত মূলনীতি” দীর্ঘস্থায়ী হয়না। পারস্পরিক বৈপরীত্যের সমালোচনা অর্থনীতি হচ্ছে বিভিন্ন স্কুল ও চিন্তাধারা গবেষণার একটি ক্ষেত্র। ফলে ইহাতে বিবেচনাধীন মতামত, আচরণ ও তত্ত্ব বিষয়বস্তু হিসেবে স্থান লাভ করে। কিছু বিরোধী বিষয়বস্তু বা ভিন্ন অণুমিত শর্তের অংশসমুহের কারণে পারস্পরিক বিরোধিতা হয়ে থকে। কল্যাণ ও দূস্প্রাপ্যতার অর্থনৈতিক সংজ্ঞার সমালোচনা অর্থনীতির সংজ্ঞার সমালোচনায় বলা হয়েছে ইহা অতি নিম্ন বস্তুগত। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, একজন ডাক্তার বা নৃত্য শিল্পীর সেবা ইহাতে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে। একটি শ্রমতত্ত্বে অবস্তুগত সেবার পারিশ্রমিকের যোগফলে সম্পূর্ণ এড়িয়ে যায় যা অসম্পূর্ণ। কল্যাণকে সংখ্যা দিয়ে পরিমাপ করা যায়না, কারণ ধনী ও গরিবের কাছে অর্থের প্রান্তিক গুরুত্ত্ব ভিন্ন ( যেমন ১০০ টাকা গরিবের কাছে ধনীর চাইতে অনেক বেশি গুরুত্ত্বপূর্ন)। তারপরও এ্যালকোহল এবং ধূমপানের মত পণ্যের উৎপাদন ও বণ্টন কার্যক্রম মানব কল্যাণে সাহায্য করেনা কিন্তু এইসব অপর্যাপ্ত পণ্য প্রাকৃতিক ভাবে মানুষের চাহিদা ও আকাঙ্ক্ষা পুরন করে। মার্ক্সীয় অর্থনীতিতে এখনও কল্যাণ সংজ্ঞার উপর আলকপাত করা হয়। ইহা ছাড়াও আদর্শবাদী অর্থনীতি শুরুতে কিছু সমালোচনায় যুক্তি দেওয়া হয় যে, বর্তমান অর্থনৈতিক চর্চা কল্যাণ পরিমাপে যথোপযুক্ত নয়, কিন্তু একমাত্র মুদ্রাবাদীদের কল্যাণের অপর্যাপ্ত সাফল্য রয়েছে। নব্য-বুনিয়াদী অর্থনীতিতে চলমান নিয়ন্ত্রণে দুস্প্রাপ্যতার উপর আলোকপাত করা হয় যা বেশির ভাগ প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি বিভাগে প্রচলিত করা হয়। সম্প্রতি বছর গুলোতে প্রাতিষ্ঠানিক অর্থনীতি, উন্নয়ন অর্থনীতি উদ্বৃত্ত অর্থনীতি সহ ইহা বিভিন্ন সময়ে সমালোচিত হচ্ছে। অর্থনীতি ও রাজনীতি জন স্টুয়ার্ট মিল বা লিওন ওয়ালার্স এর মত কিছু অর্থনীতিবিদ উল্লেখ করেন যে, সম্পদ উৎপাদনকে ইহার বণ্টনের সহিত আবদ্ধ করা যায়না। “ফলিত অর্থনীতি” এর প্রাথমিক ক্ষেত্রে যা পরবর্তীতে “সামাজিক অর্থনীতি” নামে পরিচিত হয়েছে এবং এতে ক্ষমতা ও রাজনীতি নিয়ে বৃহৎ পরিসরে আলোচনা করা হয়েছে। অর্থনীতি একটি সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে কোন সরকার বা অন্য সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী সংগঠনের রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর প্রতিষ্ঠিত হতে পারেনা। কখনও কখনও উচ্চপদস্থ নীতি নির্ধারক বা ব্যক্তি অন্য ব্যক্তিদের প্রভাবিত করতে পারে যারা অর্থনৈতিক তত্ত্বের ধারণা অধিক ব্যবহারকারী এবং নীতিগত এজেন্ডা ও মূল্য প্রক্রিয়ার বাহক হিসেবে পরিচিত এবং তাদের দায়িত্ব সম্পর্কিত বিষয় উল্লেখকে সীমিত করেনা। অর্থনৈতিক তত্ত্বের সহিৎ নিবিড় সম্পর্ক ও রাজনৈতিক সংশ্লিষ্ট চর্চা হচ্ছে একটি যৌক্তিক প্রতিফলন যা অর্থনীতির অধিকাংশ সরল মূলনীতির ছায়া অথবা বিপরীত আকৃতির এবং তা কখনও কখনও বিশেষ সামাজিক এজেন্ডা ও মূল্য পদ্ধতিকে বিভ্রান্তি করে। স্বাধীন কেন্দ্রীয় ব্যাংক বিষয়ের মত একটি কেন্দ্রীয় ব্যাংক নীতি এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংকে সরকারী বিবৃতি বা সামষ্টিক অর্থনীতির মূলনীতি (আর্থিক নীতি ও রাজস্ব নীতি) হচ্ছে যুক্তি এবং সমালোচনার প্রতিফলন। আদর্শ ও অর্থনীতি উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, ২১ শতকে ইউএস গনতন্ত্র উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে সমন্মিত করতে সম্ভব করে, ১৯ শতকে কার্ল মার্ক্সের অবদান বা পুঁজিবাদ বনাম সমাজবাদ বিতর্ক নিয়ে ঠান্ডা যুদ্ধ অর্থনীতির বিবেচ্য বিষয়। তারপরেও অর্থনীতি কোন ধরনের মূল্য অভিযোগ সৃষ্টি করেনা, ফলে ইহা একটি কারণ হতে পারে যে, অর্থনীতি পর্যবেক্ষণমূলক গবেষণা এবং অণুসিদ্ধান্ত পরীক্ষার উপর ভিত্তি না করেই পূর্বাভাস দেয়। একটি সামাজিক বিজ্ঞান হিসেবে অর্থনীতি পর্যবেক্ষণ ফলাফলের উপর এবং একই পদ্ধতি সম্পর্কে প্রয়োজনীয় গঠন ও মূল্য বিচার ছাড়াই অন্যান্য অর্থনৈতিক পদ্ধতির দক্ষতা আলোকপাত করতে চেষ্টা করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায় যে, স্বত্বাধিকারী পদ্ধতি, সমঅধিকার পদ্ধতি বা সমাজের উচ্চ শ্রেণীর পদ্ধতির অর্থনীতিতে তাদের যোগ্যতা বাচ-বিচার ছাড়াই প্রয়োগ করা হয়। নৃবিজ্ঞান ও অর্থনীতি অর্থনীতি ও দর্শনের সম্পর্ক জটিল। অনেক অর্থনীতিবিদ পছন্দ এবং মূল্য বিচারকে আদর্শ হিসেবে বিবেচনা করে যেমন অর্থনীতির পরিধির বাইরে প্রয়োজন বা অভাব বা সমাজের জন্য কোনটা উত্তম, রাজনৈতিক হবে না ব্যক্তিগত হবে। কোন সময়ে একজন ব্যক্তি বা সরকার তার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করলে অর্জন কতটুকু হওয়া উচিত অর্থনীতি ইহার অন্তর্নিহিত সত্য প্রকাশ করতে পারে। অন্য দৃষ্টিতে অর্থনৈতিক ধারণার প্রভাব যেমন, আধুনিক পুঁজিবাদে অন্তর্নিহিত বিষয়াদি, মূল্য প্রক্রিয়ার উন্নয়ন ঘটাতে পারে যদিও ইহা কাম্য কিংবা অকাম্য হউক ( উদাহরণ দেখুন, ভোগবাদ এবং ক্রয় বিহীন দিবস)। কিছু চিন্তাবিদের মতে, অর্থনীতির একটি তত্ত্ব বা ব্যবহার করা হচ্ছে একটি মানবিক বিচার তত্ত্ব। মানবিক ভোগবাদের পূর্ব অণুমান হচ্ছে একজন যখন ক্রয়ের সিদ্ধান্ত নিবে অবশ্যই মানবিক ও পরিবেশ ধারণাকে বিবেচনায় আনবে, এছাড়াও আর্থিক ও বাণিজ্যিক অর্তনীতি বিবেচনা করবে। অন্য দিকে, যৌক্তিক সীমিত সম্পদের বণ্টন সাধারণ কল্যাণ ও অর্থনীতির একটি ক্ষেত্রের অভাব পুরন করে। কিছু উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে গবেষণার উত্তম পন্থা হচ্ছে স্বাস্থ্য ও সন্তুষ্ট, পরিবেশ, বিচার বা মহাদূর্যোগে সহায়তার মত লক্ষ্য পুরনে সম্পদের বণ্টন হচ্ছে ঐচ্ছিক লুকায়িত যা, সাধারণ কল্যাণ কিংবা বৃদ্ধিপ্রাপ্ত ভোগান্তির চাইতে কম। এই ধারণায় মনে করা হয় যে, ইহা অমানবিক এবং এ ধরনের বিষয় অর্থনীতিতে আসতে পারেনা। এই কারণেই যুক্তরাষ্ট্রের রাজ্য প্রতিনিধিগণ নিয়মিত অর্থনৈতিক বিশ্লেষন গবেষণায় মিলিত হন। সামাজিক প্রভাব কেউ বলতে পারেন যে, অর্থনীতিবিদদের পরামর্শ অনুযায়ী বাজার কাঠামো ও দুস্প্রাপ্য পণ্য বণ্টনের অন্যান্য উপায় সমুহ শুধুমাত্র লক্ষ্যমাত্রা ও অভাবের উপর প্রভাব ফেলেনা, চাহিদা ও আচরণের উপরও প্রভাব ফেলে। অর্থনীতির অনেক ক্ষেত্রে বলা হয় যে, পছন্দ হচ্ছে অতীতের ইচ্ছা ব্যতিরেকে বিবেচ্য, কখনও সামাজিক শর্তারোপ করা হয় কারণ মানুষ মানসম্পন্ন জীবন যাপন কামনা করে। অর্থনৈতিক পদ্ধতিতে ইহা একটি চরম বিতর্কের বিষয় যাকে কল্যাণ প্রক্রিয়ায় প্রভাব ও কাম্য প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে। নিরপেক্ষ দৃষ্টিতে অর্থনৈতিক প্রভাবক সমুহের ব্যর্থতা হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। তারা যুক্তি দেখান যে, সম্পদের পুনঃবণ্টন মানবিক এবং অর্থনৈতিকভাবে ভুল। সমাজতান্ত্রিক দৃষ্টিতে সামাজিক ক্ষেত্রে ইহা একটি অর্থনৈতিক ব্যর্থতা। তারা যুক্তি দেখান যে,সম্পদের অসমতা প্রাথমিক আলোচনায় গ্রহণযোগ্য নয়।ইহা উনিশ শতকে শ্রম অর্থনীতি ও বিশ শতকে কল্যাণ অর্থনীতি উভয়কে মানব উন্নয়ন তত্ত্বে প্রবেশের পূর্বে পরিচালিত করে। অর্থনীতির পুরনো বিষয় ‘রাজনৈতিক অর্থনীতি’ বিশেষ করে কিছু অর্থনীতিবিদ যেমন মার্ক্সবাদী অর্থনীতিবিদগন দ্বারা অর্থনীতির বিকল্প হিসেবে এখনও ব্যবহৃত হচ্ছে। ইহা বাজার অর্থনীতির বিশেষ বিষয়ের বা উদাহরণের সাথে সমোঝতা বিহীন নির্দেশনা প্রকাশ করে। রাজনৈতিক অর্থনীতি অর্থনৈতিক বিশ্লেষনে সামাজিক রাজনৈতিক চিন্তাধারাকে অন্তভূক্ত করে এবং সেখানে উন্মুক্ত ভাববাদ বিদ্যমান, যদিও আদর্শবাদের অভিযোগ থাকলেও ইহাকে বৃহৎ অর্থনৈতিক উদ্দেশ্যমুলক নির্দেশনা বলা হয়। কিছু মুলবাদী বিশ্ববিদ্যালয়ে ( বেশির ভাগ যুক্তরাজ্যে) ‘অর্থনীতি’ বিভাগের তুলনায় ‘রাজনৈতিক অর্থনীতি’ বিভাগ বেশি রয়েছে। মার্ক্সবাদী অর্থনীতি সাধারণত অর্থের বাণিজ্য সময়কে পরিহার করে। মার্ক্সবাদী দৃষ্টিভঙ্গিতে, বিভিন্ন শ্রেণীর মধ্যে সম্পদের বণ্টনের জন্য মুল উৎস উৎপাদনের হাতিয়ারের উপর সম্মিলিত নিয়ন্ত্রণ। কোন নির্দিষ্ট বস্তুগত সম্পদের দুস্প্রাপ্যতা উৎপাদনের হাতিয়ারে শক্তি ভিত্তিক সম্পর্ক তৈরির কেন্দ্রীয় আলোচনায় গৌন বিষয়। রাজনীতিতে অর্থনীতি অর্থনীতির বাস্তব ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকল্পে প্রবৃদ্ধিকে গুরুত্ব দেয়া হয়, যা আলোচিত হয়ে আসছে “১৯০০ সাল হতে অর্থনীতির মুল পরিবর্তন” নামে। বেশির ভাগ বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজের একটি মূল, বিদ্যালয় বা বিভাগ থাকে যা বিষয়কে প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা দেয়, যেমন কলা বিভাগ, বাণিজ্য বিভাগ। “Bank of Sweden Prize in Economic Sciences in Memory of Alfred Nobel” (যাকে অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার বলা হয়) হচ্ছে অর্থনীতিবিদদের জন্য একটি বাৎসরিক পুরস্কার যা এই বিষয়ে জ্ঞান সমৃদ্ধ অবদানের জন্য দেয়া হয়। বেসরকারী খাতে যেমন শিল্প, ব্যাংক, আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইত্যাদিতে অর্থনীতিবিদগন পরামর্শদাতা হিসেবে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। অর্থনীতিবিদগন সরকারি বিভিন্ন বিভাগে এবং প্রকল্পে যেমন রাজস্ব, কেন্দ্রীয় ব্যাংক, পরিসংখ্যান ব্যুরো ইত্যাদিতে নিয়োগপ্রাপ্ত হন। প্রতিযোগিতামূলক অর্থনীতি মরিয়ম-ওয়েবস্টার অভিধানে ব্যবসায়ে প্রতিযোগিতা বলতে দুই বা ততোধিক পক্ষের মধ্যেকার অন্য কোন তৃতীয়পক্ষের অংশগ্রহণে অধিকতর ভালো পণ্য বা সেবার আশ্বাস নিয়ে অগ্রসর হওয়াকে বুঝায়। এ বিষয়ে ১৭৭৬ সালে দি ওয়েলথ অব নেশন্স গ্রন্থে বিখ্যাত অর্থনীতিবিদ এডাম স্মিথ উল্লেখ করেছেন। বাজার অর্থনীতিতেও প্রতিযোগিতা বৃহৎ ভূমিকা পালন করে এবং একই স্তরের প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের গ্রাহকদেরকে আকৃষ্ট করতে বিভিন্ন ধরনের লোভনীয় প্রস্তাব নিয়ে হাজির হয়। অনেক সময় অর্থনীতিতে তা অসুস্থ প্রতিযোগিতা নামে আখ্যায়িত হয়। উন্নয়নশীল দেশে প্রায়শঃই বহুজাতিক প্রতিষ্ঠানগুলোর গৃহীত বাজারজাতকরণ ব্যবস্থাপনার কাছে দেশী ছোট প্রতিষ্ঠানগুলো টিকে থাকতে পারে না। সভা-সমাবেশ, উন্নততর পণ্য, সেবা প্রদানের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠানগুলো প্রতিযোগিতায় টিকে থাকতে সচেষ্ট হয়। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ মূল বিষয়ের নিবন্ধ অর্থশাস্ত্র অর্থনৈতিক তত্ত্ব
https://en.wikipedia.org/wiki/Economics
Economics
Economics () is a social science that studies the production, distribution, and consumption of goods and services. Economics focuses on the behaviour and interactions of economic agents and how economies work. Microeconomics analyses what is viewed as basic elements within economies, including individual agents and markets, their interactions, and the outcomes of interactions. Individual agents may include, for example, households, firms, buyers, and sellers. Macroeconomics analyses economies as systems where production, distribution, consumption, savings, and investment expenditure interact, and factors affecting it: factors of production, such as labour, capital, land, and enterprise, inflation, economic growth, and public policies that have impact on these elements. It also seeks to analyse and describe the global economy. Other broad distinctions within economics include those between positive economics, describing "what is", and normative economics, advocating "what ought to be"; between economic theory and applied economics; between rational and behavioural economics; and between mainstream economics and heterodox economics. Economic analysis can be applied throughout society, including business, finance, cybersecurity, health care, engineering and government. It is also applied to such diverse subjects as crime, education, the family, feminism, law, philosophy, politics, religion, social institutions, war, science, and the environment.
1219
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8
বিজ্ঞান
ভৌত বিশ্বের যা কিছু পর্যবেক্ষণযোগ্য, পরীক্ষণযোগ্য ও যাচাইযোগ্য, তার সুশৃঙ্খল, সুসংবদ্ধ, নিয়মতান্ত্রিক গবেষণা, সেই গবেষণালব্ধ জ্ঞানভাণ্ডার এবং তা অর্জনের প্রক্রিয়া ও পদ্ধতিই বিজ্ঞান (Science)। অন্য ভাবে বলা যায় বিজ্ঞান হলো প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করে। ল্যাটিন শব্দ সায়েনটিয়া (scientia) থেকে ইংরেজি সায়েন্স শব্দটি এসেছে, যার অর্থ হচ্ছে জ্ঞান। বাংলা ভাষায় বিজ্ঞান শব্দটির অর্থ বিশেষ জ্ঞান। ধারাবাহিক পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার ফলে কোন বিষয়ে প্রাপ্ত ব্যাপক ও বিশেষ জ্ঞানের সাথে জড়িত ব্যক্তি বিজ্ঞানী, বিজ্ঞানবিদ কিংবা বৈজ্ঞানিক নামে পরিচিত হয়ে থাকেন। বিজ্ঞানীরা বিশেষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ করে জ্ঞান অর্জন করেন এবং প্রকৃতি ও সমাজের নানা মৌলিক বিধি ও সাধারণ সত্য আবিষ্কারের চেষ্টা করেন। বর্তমান বিশ্ব এবং এর প্রগতি নিয়ন্ত্রিত হয় বিজ্ঞানের মাধ্যমে। তাই এর গুরুত্ব অপরিসীম। ব্যাপক অর্থে যেকোনো জ্ঞানের পদ্ধতিগত বিশ্লেষণকে বিজ্ঞান বলা হলেও এখানে বিশেষায়িত ক্ষেত্রে শব্দটি ব্যবহার করা হবে। বিজ্ঞান চর্চার সূত্র সুদূর অতীত ৩০০০ থেকে ১২০০ বিসিই সময়কালে প্রাচীন মিশর এবং মেসোপটেমিয়ায় পাওয়া যায়। তাদের গণিত, জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং চিকিৎসাশাস্ত্রের জ্ঞান পরবর্তীতে গ্রিক ধ্রুপদী সভ্যতার দর্শনশাস্ত্রে প্রভাব রাখে তার পাশাপাশি প্রাকৃতিক কারণগুলোর উপর ভিত্তি করে বস্তুজগতকে ব্যাখ্যা করার সাধারণ প্রচেষ্টাও ছিল। পশ্চিমা রোমান সম্রাজ্য পতিত হবার পর পশ্চিমা ইউরোপে গ্রিকের পৃথিবী সম্পর্কিত জ্ঞান কমতে থাকে যা মধ্যযুগের ৪০০ থেকে ১০০০ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত ছিল। পরে ইসলামিক স্বর্ণযুগে তার সংরক্ষিত হয়। ১০ম থেকে ১৩শ শতাব্দিতে গ্রিকদের জ্ঞান এবং পশ্চিম ইউরোপের থেকে প্রাপ্ত জ্ঞান একত্রে পুর্নজাগরিত হয় "প্রাকৃতিক দর্শন" হিসেবে। যা ১৬শ শতকে শুরু হওয়া বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সময় থেকে রূপান্তরিত হতে থাকে। সেই সময় নতুন নতুন আবিষ্কার ও চিন্তাধারার কারনে গ্রিকদের ধারণা এবং চেতনার থেকে তা আলাদা পথে ধাবিত হয়। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি জ্ঞান সৃষ্টির ক্ষেত্রে দ্রুতই বড় ধরনের ভূমিকা পেতে লাগল। ১৯শ শতকের মধ্যেই অনেক পেশাগত এবং বিদ্যাগত বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা পরিপূর্ণ রূপ পেতে শুরু করে। এরই সাথে সাথে "প্রাকৃতিক দর্শন" রূপান্তরিত হয়ে আর্বিভূত হয় "প্রাকৃতিক বিজ্ঞান" হিসেবে। আধুনিক বিজ্ঞানকে সাধারণত তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়: ১. প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, যা প্রাকৃতিক ঘটনাবলি ব্যাখ্যা প্রদান করে। ২. সামাজিক বিজ্ঞান , যা মানবিক আচরণ ও সমাজের অধ্যয়ন করে, ৩. সাধারণ/বিধিবদ্ধ বিজ্ঞান যা বিজ্ঞানের আদি মৌলিক বিষয় যেমন যুক্তি, গণিত ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করে। তবে সাধারণ বিজ্ঞানের শ্রেণীকে নিয়ে মতভেদ রয়েছে আদৌ এটি কোন বিজ্ঞান হয় কি না তা নিয়ে কেননা এগুলো কোন পরীক্ষামূলক প্রমাণ দিতে পারে না। বর্তমানে স্বীকৃত কোন বৈজ্ঞানিক জ্ঞানকে বাস্তবিক ক্ষেত্রে প্রয়োগ করলে তাকে ফলিত বিজ্ঞান বা প্রায়োগিগ বিজ্ঞান বলে যেমন প্রকৌশলবিদ্যা এবং চিকিৎসাশাস্ত্র। জীববিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, রসায়নসহ এ ধরনের সকল বিজ্ঞান প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত। অন্যদিকে মানুষের আচার-ব্যবহার এবং সমাজ নিয়ে যে বিজ্ঞান তা সমাজ বিজ্ঞানের অন্তর্ভুক্ত। তবে যে ধরনেরই হোক, বিজ্ঞানের আওতায় পড়তে হলে উক্ত জ্ঞানটিকে সুনির্দিষ্ট পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণিত হতে হবে। আর একই শর্তের অধীনে যে গবেষকই পরীক্ষণটি করুন না কেন ফলাফল একই হতে হবে। অর্থাৎ ব্যক্তি চেতনা অনুযায়ী বিজ্ঞানভিত্তিক পরীক্ষণের ফলাফল কখনও পরিবর্তিত হতে পারে না। বিজ্ঞান গবেষণার উপর নির্ভর করে। গবেষণাগুলো সাধারণত বিজ্ঞানীদের দ্বারা শিক্ষাক্ষেত্রে এবং গবেষণা প্রতিষ্ঠানে, সরকারি প্রতিষ্ঠানে এবং কোম্পানিভিত্তিক উদ্যোগে করা হয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণার বাস্তবিক প্রভাব বৈজ্ঞানিক নীতি গ্রহনে বাধ্য করেছে। বৈজ্ঞানিক নীতি দ্বারা বিজ্ঞানভিত্তিক প্রতিষ্ঠানগুলোকে প্রভাবিত করা হয়। প্রতিষ্ঠানগুলোকে জনসার্থে ব্যবহৃত পন্য, স্বাস্থ্যসেবা, জন কাঠামো, পরিবেশের সুরক্ষা এবং অস্ত্র তৈরির মত বিষয়গুলোকে প্রাধান্য দিতে নীতিমালা অনুসরন করানো হয়। গণিতকে অনেকেই আলাদা একটি শ্রেণি হিসেবে দেখেন। অর্থাৎ তাদের মতে প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, সামাজিক বিজ্ঞান আর গণিত এই তিনটি শ্রেণি মিলে বিজ্ঞান। ঐ দৃষ্টিকোণে গণিত হলো আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞান আর প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিজ্ঞান হলো পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞান। প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিজ্ঞানের সাথে গণিতের মিল-অমিল উভয়ই রয়েছে। গণিত একদিক থেকে পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ যে, উভয়টিই একটি নির্দিষ্ট বিষয়ে পদ্ধতিগত অধ্যয়ন করে। আর পার্থক্য হচ্ছে, পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানে পরীক্ষণের মাধ্যমে প্রমাণ করা হলেও গণিতে কোনো কিছু প্রতিপাদন করা হয় আগের একটি সূত্রের ওপর নির্ভর করে। এই আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞান, যার মধ্যে পরিসংখ্যান এবং যুক্তিবিদ্যাও পড়ে, অনেক সময়ই পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে বিশেষ ভূমিকা রাখে। তাই পরীক্ষণমূলক বিজ্ঞানে উন্নতি করতে হলে আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞানের প্রসার আবশ্যক। কীভাবে কোনো কিছু কাজ করে (প্রাকৃতিক বিজ্ঞান) বা কীভাবে মানুষ চিন্তা করে (সামাজিক বিজ্ঞান) তাই আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞান ব্যাখ্যা করে। ইতিহাস আধুনিক যুগের পূর্বে ও বিভিন্ন ঐতিহাসিক সভ্যতায় বিজ্ঞান ব্যাপক অর্থে ব্যবহৃত হত। আধুনিক বিজ্ঞান পদ্ধতিতে স্বতন্ত্র এবং ফলাফলের মধ্যে সফল তাই বিজ্ঞান বলতে কি বোঝায় তা এখন পরিষ্কার এবং কঠোরভাবে সংজ্ঞায়ীত । বিজ্ঞান শব্দটি উৎপত্তিগতভাবে এক ধরনের জ্ঞান বোঝাতো কিন্তু বিজ্ঞান সম্পর্কিত জ্ঞান অর্জন বুঝাতো না । বিশেষ করে, এটি ছিল এক ধরনের জ্ঞান যা মানুষের একে অপরের সাথে যোগাযোগ করতে ব্যবহৃত হত। উদাহরণস্বরূপ, প্রাকৃতিক বিষয়গুলির জ্ঞান লিপিবদ্ধ হবার পূর্বেই এগুলো সংগৃহীত হয়েছিল এবং জটিল বিমূর্ত ধারণাগুলির উন্নয়ন ঘটেছিল । এটি ছাপ দেখা যায় জটিল ক্যালেন্ডার নির্মাণ, কৌশল ব্যবহার করে বিষাক্ত উদ্ভিদকে খাবার উপযোগী করে তোলা, জনমানুষের জন্য জাতীয় পর্যায়ে কাজ করা যেমন প্লাবনভূমি থেকে বাধেঁর মাধম্যে জলাধার নির্মান এবং পিরামিডের মতো ভবন তৈরী করা। যাইহোক, এই ধরনের জিনিসগুলির জ্ঞানের মধ্যে কোন সঙ্গতিপূর্ণ বিশিষ্ট পার্থক্য তৈরি করা হয়নি যা প্রতিটি সম্প্রদায়ের মধ্যে সত্য। সেই সাথে অন্যান্য ধরনের সাম্প্রদায়িক জ্ঞানের মতো বিষয়, যেমন: পৌরাণিক কাহিনী এবং আইনি ব্যবস্থা ইত্যাদির বেলাও তা সত্য। ধাতুবিদ্যা পূর্বেও জানা ছিল এবং ভিনট্ফাক সংস্কৃতিতে ব্রোঞ্জের মত পদার্থ তৈরির জ্ঞান জানত। মনে করা হয় পূর্বে কোন বস্তু গরম করে গলিয়ে সেটার সাথে অন্যকোন উপাদান, পদার্থ যোগ করে অন্য একটি ধাতু তৈরির যে জ্ঞান সেটাই ধীরে ধীরে "আলকেমি" নামে পরিচিত হয়। প্রাকাদিকালের বিস্তার যুগ সক্রেটিস পূর্ব দার্শনিকগণ দ্বারা "প্রকৃতি" (প্রাচীন গ্রিক ফোসিস) এর ধারণার উদ্ভাবনের আগে, একই শব্দটি ব‍্যবহার করা হত একটি প্রাকৃতিক "পথ" বোঝাতে। যেভাবে একটি উদ্ভিদ বৃদ্ধি পায় অথবা একটি উপজাতি যেভাবে একটি নির্দিষ্ট ঈশ্বরকে পূজা করে এমন ধারনাকে বোঝাতে। এই কারণেই এই দাবি করা হত যে, কঠোর অর্থে এই পুরুষরা প্রথম দার্শনিক ছিল। এমনকি ধারণা করা হত প্রথম মানুষটি "প্রকৃতি" এবং "রীতি" প্রভৃতির পার্থক্য স্পষ্ট করে তুলে ধরেছিল । বিজ্ঞান প্রকৃতির জ্ঞান হিসাবে বিশিষ্ট ছিল এবং প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য যা ছিল সত্য জিনিস। আর এই ধরনের বিশেষ জ্ঞান সাধনার নাম ছিল দর্শন - প্রথম দার্শনিক-পদার্থবিজ্ঞানীর আলোচ্য বিষয় । তারা প্রধানত ছিল তত্ত্ববিদ, বিশেষ করে জ্যোতির্বিদ্যাতে আগ্রহী ছিল । এর বিপরীতে, প্রকৃতির জ্ঞানকে ব‍্যবহার করে প্রকৃতির অনুকরণ করার চেষ্টা, শাস্ত্রীয় বিজ্ঞানীদের দ্বারা নিম্ন শ্রেণির কারিগরদের জন্য আরও উপযুক্ত স্বার্থ হিসাবে দেখা হত । প্রথাগত এবং গবেষণামূলক বিজ্ঞান মধ্যে একটি স্পষ্ট পার্থক্য প্রাক-সক্রেটিস দার্শনিক পার্মিনাইডস (প্রায় ছয় শতকের প্রথম দিকে বা পঞ্চম শতকের প্রথম দিকে ) তৈরি করে ছিলেন । যদিও তার কাজটি ছিল পেরি ফিসুয়েস (প্রকৃতির উপর) একটি কবিতা, প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের পদ্ধতিতে একে একটি জ্ঞানতাত্ত্বিক প্রবন্ধ হিসেবে দেখা যেতে পারে। পার্মিনাইডস ' একটি প্রথাগত পদ্ধতি বা ক্যালকুলাসকে নির্দেশ করে যা প্রাকৃতিক ভাষাগুলির তুলনায় প্রকৃতির নিখুঁত বর্ণনা করতে পারে। "ফিজিস" এর অনুরূপ হতে পারে । প্রথম দিকে দার্শনিক বিজ্ঞানের ইতিহাসে একটি বড় টার্নিং পয়েন্ট হল সক্রেটিস কর্তৃক মনুষ্য প্রকৃতি, রাজনৈতিক সম্প্রদায়ের প্রকৃতি এবং মানব জ্ঞানের সাথে মানবিক বিষয়গুলির গবেষণায় দর্শন প্রয়োগের বিষয় বিতর্কিত কিন্তু সফল প্রচেষ্টা ছিল। তিনি পুরাতন ধরনের পদার্থবিজ্ঞানের গবেষণার সমালোচনা করেছিলেন যেমনটা কেবল বিশ্লেষণেই এবং স্ব-সমালোচনার অভাব ছিল । তিনি বিশেষ করে সচেতন ছিলেন যে কিছু প্রাথমিক পদার্থবিজ্ঞানী প্রকৃতিকে এমনভাবে ব্যবহার করেছিলেন যেখানে এর কোন বুদ্ধিমান শৃঙ্খলা নেই, যা কেবল গতি ও বস্তুর ক্ষেত্রকেই ব্যাখ্যা করে । মানবকেন্দ্রিক অধ্যয়ন ছিল পৌরাণিক এবং ঐতিহ্য ভিত্তিক, সক্রেটিস এর বাহিরে গিয়ে জ্ঞানদান করতে চেয়েছিলেন, তাই তাকে হত্যা করা হয়েছিল। অ্যারিস্টটল সক্রেটিসের চেয়ে কম বিতর্কিত পদ্ধতি তৈরি করেছিলেন। তিনি পূর্বের বিজ্ঞানীদের অনেক মীমাংসিত বিষয়কে প্রত্যাখ্যান করেছিলেন । উদাহরণস্বরূপ, তার পদার্থবিজ্ঞানে সূর্য পৃথিবীর চারপাশে ঘুরে এবং অনেকগুলো প্রকৃতির অংশ হিসাবে যা ছিল মানুষের জন্য। প্রতিটি জিনিসের একটি আনুষ্ঠানিক কারণ এবং চূড়ান্ত কারণ থাকে এবং তার সাথে যুক্তিসঙ্গত মহাজাগতিক ক্রমের একটি ভূমিকা আছে । গতি এবং পরিবর্তনকে ইতোমধ্যে সম্ভাব্য বাস্তবায়ন হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছিল তাদের ধরনটা কেমন তার উপর ভিত্তি করে । সক্রেটিস যখন দৃঢ়তার সাথে দাবি করেন যে মানুষের জন্য জীবিত থাকার সর্বোত্তম উপায় (একটি অধ্যয়ন অ্যারিস্টটল একে নৈতিকতা ও রাজনৈতিক দর্শনে বিভক্ত করেছিলেন) এর ব্যবহারিক প্রশ্ন বিবেচনা করার জন্য দর্শনের ব্যবহার করা উচিত, তখন তারা অন্য কোনও ধরনের প্রযোজ্য বিজ্ঞানের পক্ষে তর্কবিতর্ক করে না। অ্যারিস্টটল বিজ্ঞান এবং কারিগরদের ব্যবহারিক জ্ঞানের মধ্যে তীক্ষ্ণ পার্থক্য বজায় রেখেছিলেন । তাত্ত্বিক ধারণাকে মানবীয় ক্রিয়াকলাপের সর্বোচ্চ ধরন হিসাবে তিনি বিবেচনা করতেন । কম জীবনধারা হিসাবে ব্যবহারিক চিন্তাভাবনা ভাল জীবনযাপনের জন্য উঁচুমানের এবং কারিগরদের জ্ঞান নিম্ন শ্রেণির জন্য উপযুক্ত বলে তিনি মনে করতেন । মধ্যযুগীয় বিজ্ঞান প্রাক-প্রাচীন এবং প্রাথমিক মধ্যযুগে প্রাকৃতিক ঘটনাগুলির অনুসন্ধানে অ্যারিস্টটলীয় পদ্ধতির ব্যবহার করা হয়েছিল । রোমান সাম্রাজ্য পতনের সময় এবং পর্যায়ক্রমিক রাজনৈতিক সংগ্রামের সময় কিছু প্রাচীন জ্ঞান হারিয়ে গিয়েছিল, অথবা কিছুটা অস্পষ্ট অবস্থায় রাখা হয়েছিল। যাইহোক, বিজ্ঞানের সাধারণ ক্ষেত্র (বা "প্রাকৃতিক দর্শন" যেটিকে বলা হয়) এবং প্রাচীন বিশ্বের অধিকাংশ সাধারণ জ্ঞান সেভিলের ইসিডোরের মতো প্রাথমিক ল্যাটিন এনসাইক্লোপিডীয়দের কাজগুলির মাধ্যমে সংরক্ষিত ছিল। বাইজেন্টাইন সাম্রাজ্যে অনেক গ্রিক বিজ্ঞানের গ্রন্থগুলি নেস্টোরিয়ান্স এবং মনোফিসিটস গোষ্ঠী দ্বারা সম্পন্ন সিরিয়াক অনুবাদগুলিতে সংরক্ষিত ছিল। এইগুলির মধ্যে বেশিরভাগই পরবর্তীতে খলিফাদের অধীনে আরবিতে অনূদিত হয়েছিল, যার মধ্যে অনেক ধরনের শাস্ত্রীয় শিক্ষা সংরক্ষণ করা হয়েছিল এবং কিছু কিছু ক্ষেত্রে উন্নতি সাধিত হয়েছিল। "উইসডম হাউস" আব্বাসীয় যুগে ইরাকের বাগদাদে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । এটি ইসলামিক "স্বর্ণযুগ" এর একটি প্রধান জ্ঞান চর্চা কেন্দ্র বলে বিবেচিত হয়, যেখানে বাগদাদে আল-কিন্দি এবং ইবনে সাহল এর মত মুসলিম পণ্ডিত এবং কায়রোতে ইবনে আল-হায়তাম নবম থেকে ত্রয়োদশ শতাব্দী পর্যন্ত সমৃদ্ধ হয়েছিল বাগদাদ মোঘলদের দ্বারা ধ্বংস হওয়ার আগ পর্যন্ত ॥ ইবনে আল-হায়থাম যিনি পশ্চিমে আলহাজেন হিসেবে পরিচিত, তিনি পরীক্ষামূলক তথ্যের উপর জোর দিয়ে অ্যারিস্টটলীয় দৃষ্টিকোণকে আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন । পরে মধ্যযুগীয় সময়ের মধ্যে, অনুবাদের জন্য চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছিল (উদাহরণস্বরূপ, টলেডো অনুবাদকদের বিদ্যালয়), পশ্চিমা ইউরোপীয়রা শুধুমাত্র ল্যাটিন ভাষায় নয় বরং গ্রিক, আরবি এবং হিব্রু থেকে ল্যাটিন অনুবাদ লিখিত সংগ্রহগুলি সংগ্রহ করতে শুরু করেছিল । বিশেষত, অ্যারিস্টটল, টলেমী, এবং ইউক্লিডের গ্রন্থগুলো উইসডম এর ঘরগুলিতে সংরক্ষিত ছিল যা ক্যাথলিক পণ্ডিতদের মধ্যে চাওয়া হয়েছিল । ইউরোপে, আলহাজেনের বুক অফ অপটিকস এর ল্যাটিন অনুবাদ সরাসরি ইংল্যান্ডে রজার বেকনকে (ত্রয়োদশ শতকে) প্রভাবিত করেছিল, যিনি আলহাজেনের দ্বারা প্রকাশিত আরও পরীক্ষামূলক বিজ্ঞান সম্পর্কে যুক্তি দিয়েছিলেন। মধ্যযুগ যুগ ধরে, পশ্চিমা ইউরোপে ক্যাথলিকবাদ ও আরিস্টোলেটিয়ালিজমের একটি সংশ্লেষণের উদ্ভব হয় যা পশ্চিমা ইউরোপে উদ্দীপ্ত ছিল, যেখানে বিজ্ঞান একটি নতুন ভৌগোলিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছিল । কিন্তু পঞ্চদশ থেকে ষোড়শ শতাব্দীতে পণ্ডিতবাদের সকল দিক নিয়ে সমালোচনা করা হয়েছিল। রেনেসাঁ এবং আধুনিক বিজ্ঞান মধ্যযুগীয় বিজ্ঞান সক্রেটিস, প্লেটো এবং অ্যারিস্টটলের হেলেনিস্ট সভ্যতার মতামত বহন করে, যেমন আলহাজেনের হারানো কর্মের একটি বইয়ে দেখানো হয়েছে যেখানে 'আমি ইউক্লিড ও টলেমীর দুই বই থেকে অপটিক্সের বিজ্ঞান সমন্ধে তুলেছি, যা আমি যোগ করেছি প্রথম বক্তৃতা যা ইবনে আবি যোসেবিয়া এর ক্যাটালগ থেকে টলেমীর বই থেকে হারিয়ে যাওয়া (স্মিথ ২০০১): ৯১ (ভল .১), পি. এক্স. ভি । আলহাজেন নিছক টলেমীর দৃষ্টি তত্ত্বকে ভুল প্রমাণ করেছিলেন, কিন্তু তিনি অ্যারিস্টটলের তত্ত্ববিদ্যা বজায় রেখেছিলেন; রজার বেকন, ভিটেল্লো এবং জন পেখাম প্রত্যেকে আলহাজেনের বুক অফ অপটিক্স-এর উপর একটি তত্ত্ববিদ্যা রচনা করেছিলেন । একটি সংবেদন চিহ্নের শৃঙ্খলে সেন্সেশন, ধারণা এবং শেষ পর্যন্ত অ্যারিস্টটলের ব্যক্তিগত ও সার্বজনীন ফর্মগুলির স্বীকৃতি দিয়েছিলেন । দৃষ্টি তত্ত্বের এই মডেল Perspectivism হিসাবে পরিচিত হয়ে ওঠে, যা রেনেসাঁ শিল্পীদের দ্বারা ব্যবহৃত এবং অধ্যয়ন করা হয়েছিল । এ .মার্ক স্মিথ দৃষ্টিতত্ত্ব নিয়ে তার নিজস্ব দৃষ্টিভঙ্গি নির্দেশ করেছিল যা অ্যারিস্টটলের চারটির মধ্যে তিনটি কারণ আনুষ্ঠানিক, পদার্থ এবং চূড়ান্ত দোষে দায়ী, " যা মূলত অর্থনৈতিক, যুক্তিসঙ্গত এবং সুসঙ্গত।" যদিও আলহাজেন জানতেন যে একটি দৃশ্য একটি অ্যাপারচারের মাধ্যমে চিত্রিত করা হয়েছে যা হল তার বিপরীত । তিনি যুক্তি দেন যে দৃষ্টি হল উপলব্ধি সম্পর্কিত । যা কেপলার দ্বারা উল্টানো হয়েছিল, যিনি প্রবেশপথের ছাত্রকে মডেল করার জন্য এটির সামনে একটি অ্যাপারচার সহ একটি জলভর্তি কাঁচের মতো চোখের মডেল করেছিলেন । তিনি দেখেছিলেন যে, একক দৃষ্টিকোণ থেকে সমস্ত আলো এক গ্লাসে কাচের গোলকের পিছনে চিত্রিত হয়েছিল । অপটিক্যাল শিকল চোখের পেছনে রেটিনাতে শেষ হয় এবং ছবিটি উল্টে যায়। কোপার্নিকাস টলেমীর আলমাজেস্টের পৃথিবীকেন্দ্রিক মডেলের বিপরীতে সৌরজগতের একটি সূর্যকেন্দ্রিক মডেল তৈরি করেছিলেন। গালিলিও পরীক্ষামূলক ও গণিতের উদ্ভাবনী ব্যবহার করেছিলেন । যাইহোক, তিনি অষ্টম পোপ আরবান দ্বারা কোপার্নিকাসের ব্যবস্থার বিষয়ে লিখতে আশীর্বাদ পুষ্ট হয়েছিলেন । গালিলিও পোপের কাছ থেকে আর্গুমেন্ট ব্যবহার করেছিলেন এবং তাদেরকে "ডায়ালগ কনসার্নিং দ্য টু চিফ ওয়ার্ল্ড সিস্টেম" এ কাজটি সহজবোধ্যতার জন্য দিয়েছিলেন যা তাকে অনেকটা হতাশ করেছিল। উত্তর ইউরোপে প্রিন্টিং প্রেসের নতুন প্রযুক্তি ব্যাপকভাবে বহু আর্গুমেন্ট প্রকাশ করতে ব্যবহৃত হয়েছিল, কিছু কিছু ক্ষেত্রে প্রকৃতির সমসাময়িক ধারণাগুলির সাথে ব্যাপকভাবে মতবিরোধে ছিল। রেনি ডেসকার্টেস এবং ফ্রান্সিস বেকন একটি নতুন ধরনের অ-অ্যারিস্টটলীয় বিজ্ঞানের পক্ষে দার্শনিক আর্গুমেন্ট প্রকাশ করেছিলেন । Descartes দাবী করেন যে গ্যালিলিওর মত প্রকৃতির অধ্যয়ন করার জন্য গণিত ব্যবহার করা যেতে পারে এবং বেকন চিন্তার উপর গবেষণার গুরুত্বের উপর জোর দিয়েছিলেন । বেকন Aristotelian আনুষ্ঠানিক কারণ এবং চূড়ান্ত কারণের ধারণা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন এবং বিজ্ঞানকে "সহজ" প্রকৃতির নিয়মগুলির মাধ্যমে অধ্যয়ন করা উচিত, যেমন- তাপকে কোনও নির্দিষ্ট প্রকৃতি বা "আনুষ্ঠানিক কারণ" বলে অভিহিত করা যায় না। এই নতুন আধুনিক বিজ্ঞান নিজেকে "প্রাকৃতিক আইন" হিসাবে বর্ণনা করতে শুরু করেছিল । প্রকৃতির গবেষণায় এই হালনাগাদ পদ্ধতিটিকে যান্ত্রিক হিসাবে দেখা হয় । বেকন যুক্তি দেন যে বিজ্ঞানের উচিত সমস্ত মানব জীবনের উন্নতির জন্য ব্যবহারিক আবিষ্কারগুলির উপর জোর দেয়া । নবজাগরণের যুগ সপ্তদশ ও অষ্টাদশ শতকের মধ্যে আধুনিকতার প্রকল্প বেকন ও রেনে দেকার্তের দ্বারা উন্নত করা হয়েছিল যা দ্রুত বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়েছিল এবং একটি নতুন ধরনের প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, গাণিতিক, পদ্ধতিগতভাবে পরীক্ষামূলক এবং ইচ্ছাকৃতভাবে উদ্ভাবনী এর সফল উন্নয়নের দিকে পরিচালিত হয়েছিল । নিউটন ও লিবনিজ একটি নতুন পদার্থবিজ্ঞান তৈরিতে সফল হয়েছিলেন যা এখন ক্লাসিক্যাল মেকানিক্স হিসাবে পরিচিত, যা পরীক্ষা দ্বারা নিশ্চিত করা যায় এবং গণিত ব্যবহার করে ব্যাখ্যা করা যায় । লিবনিস এরিস্টটলিয়ান পদার্থবিদ্যা থেকে পদটি নিয়েছিলেন, কিন্তু এখন এটি একটি নতুন অ-টেলিওলজিকাল পদ্ধতিতে ব্যবহার করা হচ্ছে, উদাহরণস্বরূপ, "শক্তি" এবং "সম্ভাব্যতা" (Aristotelian "Energeia এবং potentia" এর আধুনিক সংস্করণ) । বেকনের শৈলীতে তিনি ধারণা করেছিলেন যে, বিভিন্ন ধরনের জিনিস প্রকৃতির একই সাধারণ সূত্র অনুযায়ী কাজ করে যার প্রতিটি ধরনের কোন বিশেষ আনুষ্ঠানিক বা চূড়ান্ত কারণ নেই। এই সময়ের মধ্যে "বিজ্ঞান" শব্দটি ধীরে ধীরে এক প্রকারের জ্ঞান বিশেষ করে প্রাকৃতিক জ্ঞানের প্রেক্ষাপট হিসাবে ব্যবহৃত হতে শুরু হয়েছিল যা পুরাতন শব্দ "প্রাকৃতিক দর্শনের" অর্থের কাছাকাছি চলে আসছে। উনিশ শতক জন হার্শেল এবং উইলিয়াম হুইয়েল উভয়ে মিলে প্রণালী বিজ্ঞানকে একটি সিস্টেমের মধ্যে নিয়ে এসেছিলেন পরে শব্দটি বিজ্ঞানীকে বুঝানো হত । যখন চার্লস ডারউইন 'দ্য অরিজিন অব স্পিসিজ' প্রকাশ করেছিলেন তখন তিনি বিবর্তনকে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন প্রচলিত জৈবিক জটিলতার ব্যাখ্যা হিসাবে । তার প্রাকৃতিক নির্বাচনের তত্ত্বটি কীভাবে প্রজাতি উৎপন্ন হয়েছিল তার প্রাকৃতিক ব্যাখ্যা প্রদান করেছিল । তবে এটি কেবল শত বছর পরে ব্যাপক স্বীকৃতি লাভ করেছিল । জন ডাল্টন পরমাণুর ধারণাটির উন্নয়ন করেছিলেন । ঊনবিংশ শতাব্দীতে তাপবিদ্যুৎ এবং তড়িৎচুম্বকীয় তত্ত্বের আইনগুলিও প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যার ফলে নতুন প্রশ্নগুলি উত্থাপিত হয়েছিল যা নিউটনের কাঠামো ব্যবহার করার মাধ্যমেও সহজেই উত্তর মেলেনি । উনিশ শতকের শেষ দশকে পরমাণুর বিভাজনকে পুনর্নির্মাণ করার ঘটনাটি আবিষ্কৃত হয়েছিল । এক্স-রশ্মি আবিষ্কার তেজস্ক্রিয়তা আবিষ্কারকে অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। পরের বছর প্রথম উপপারমানবিক কণা ইলেকট্রন আবিষ্কৃত হয়েছিল । বিংশ শতাব্দী আইনস্টাইনের আপেক্ষিকতাবাদ এবং কোয়ান্টাম বলবিদ্যা এর বিকাশের ফলে একটি নতুন পদার্থবিজ্ঞানের সাথে শাস্ত্রীয় বলবিজ্ঞানগুলির প্রতিস্থাপনের সৃষ্টি হয় যার দুটি অংশ রয়েছে।তাদের মাধ্যমে প্রকৃতির বিভিন্ন ধরনের ঘটনা বর্ণনা করা যায়। বিংশ শতাব্দীর প্রথমার্ধে কৃত্রিম সারের উন্নয়ন বিশ্বব্যাপী জনসংখ্যার বৃদ্ধি সম্ভব হয়েছে। একই সময়ে পরমাণু এবং নিউক্লিয়াস এর গঠন আবিষ্কার করা হয়েছিল, যার ফলে "পারমাণবিক শক্তি" (নিউক্লীয় ক্ষমতা) মুক্ত করা সম্ভব হয়েছিল। উপরন্তু, এই শতাব্দীর যুদ্ধ দ্বারা অনুপ্রাণিত বৈজ্ঞানিক উদ্ভাবনের ব্যাপক ব্যবহার অ্যান্টিবায়োটিকের আবিষ্কার সহজসাধ্য করেছিল যার ফলে মানুষের প্রত্যাশিত গড় আয়ু বৃদ্ধি পেয়েছিল। তাছাড়া পরিবহন বিপ্লব (অটোমোবাইল এবং বিমান), ICBM এর বিকাশ, মহাকাশ নিয়ে প্রতিযোগিতা, এবং পারমাণবিক অস্ত্র নিয়ে প্রতিযোগিতা, সবকিছুই আধুনিক বিজ্ঞানের উপহার যা সবাই গুরুত্বের সাথে গ্রহণ করেছে। বিংশ শতাব্দীর শেষ চতুর্থাংশে যোগাযোগের উপগ্রহগুলির সাথে সংযুক্ত ইন্টিগ্রেটেড সার্কিটগুলির বিস্তৃত ব্যবহার তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে একটি বিপ্লব বয়ে নিয়ে আসে যার ফলে স্মার্টফোন সহ বিশ্বব্যাপী ইন্টারনেট এবং মোবাইল কম্পিউটিংয়ের উত্থান ঘটেছে। একবিংশ শতক মানব জিনোম প্রকল্পটি ২০০৩ সালে পূর্ন হয় যাতে সম্পূর্ণভাবে নিওক্লিওটাইড ভিত্তিক জোড় সিকোয়েন্স নির্ধারন করে মানব শরীরস্থ ডিএনএ চিহ্নিত করা হয় সেই সাথে মানব জিনোম এবং জিনের মানচিত্রও চিহ্নিত করা হয়। ইনডিউস প্লুরিপোটেন্ট স্টেম কোষ আবিষ্কৃত হয় ২০০৬ সালে যা একটি প্রযুক্তি যাকে ব্যবহার করে বয়স্ক কোষগুলিকে স্টেম কোষে রূপান্তর করা যায় যা শরীরস্থ যে কোন কোষের প্রতিস্থাপন সম্ভবনা বাড়িয়ে দিয়েছে। এর ফলে পুনরুত্পাদনশীল চিকিৎসাবিজ্ঞানে এর গুরুত্ব অনেক বেড়ে যায়। ২০১৫ সালে মধ্যাকর্ষীয় তরঙ্গ প্রথম পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব হয় যা সাধারণ রিলেটিভিটিতে এক শতাব্দি পূর্বেই অনুমান করা হয়েছিল। ২০২১ সালে হিগস বোসন কনার আবিষ্কারের ফলে প্রমিত মডেলের শেষ কণা হিসেবে বিজ্ঞানিগণ যে কনাটিকে অনুমান করেছিলেন তা পাওয়া যায়। বিজ্ঞানের শাখা এবং ক্ষেত্র আধুনিক বিজ্ঞানকে সাধারণত তিনটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়: প্রাকৃতিক বিজ্ঞান, যা প্রাকৃতিক ঘটনা (জীববিজ্ঞান সহ), সামাজিক বিজ্ঞান, যা মানবিক আচরণ ও সমাজের অধ্যয়ন করে এবং সাধারণ বিজ্ঞান। প্রথম দুটি বিজ্ঞান গবেষণামূলক বিজ্ঞান, যার মানে তাদের জ্ঞানটি দৃশ্যমান ঘটনা এবং তার অবস্থার জন্য একই অবস্থার অধীনে কাজ করে এমন অন্যান্য গবেষকদের দ্বারা যাচাই করার জন্য সক্ষম হতে হবে । এছাড়াও সম্পর্কিত বিষয়গুলি যেমন আন্তঃসম্পর্কিত প্রয়োগ বিজ্ঞান হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়, যেমন ইঞ্জিনিয়ারিং এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান, এগুলোকে প্রায়োগিক বিজ্ঞান হিসেবে অভিহিত করা হয়। এই বিভাগগুলি ছাড়াও আরও বিশেষ বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র রয়েছে যাদেরকে অন্যান্য বৈজ্ঞানিক শাখার অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে যদিও প্রায়ই তাদের নিজস্ব নামকরণ এবং দক্ষতা থাকে । নিম্নোক্ত ছক দ্বারা বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখার মধ্যকার সর্ম্পক তুলে ধরা হল: গণিতকে একটি সাংগঠনিক বিজ্ঞান হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয়।এর সাথে গবেষণামূলক বিজ্ঞান (প্রাকৃতিক ও সামাজিক বিজ্ঞান) উভয়ের সাদৃশ্য এবং বৈসাদৃশ্য আছে। এটি পরীক্ষামূলক অনুষঙ্গের অনুরূপ যেহেতু এটি জ্ঞানের একটি ক্ষেত্রের উদ্দেশ্যমূলক,সতর্ক এবং নিয়মানুগ গবেষণার সাথে জড়িত; অভিজ্ঞতানির্ভর পদ্ধতির পরিবর্তে অগ্রাধিকারের ব্যবহার করে তার জ্ঞান যাচাইয়ের পদ্ধতির কারণে এটি ভিন্ন । সাংগঠনিক বিজ্ঞান যা পরিসংখ্যান এবং যুক্তিবিদ্যাকে অন্তর্ভুক্ত করে, পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।সাংগঠনিক বিজ্ঞানে বড় বড় অগ্রগতি সবসময় প্রধান পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানকে অগ্রগতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায় । সাংগঠনিক বিজ্ঞান অনুমান, তত্ত্ব ও সূত্রের গঠনের জন্য অপরিহার্য।তাছাড়া কোন জিনিস কীভাবে কাজ করে (প্রাকৃতিক বিজ্ঞান) এবং মানুষ কীভাবে চিন্তা করে এবং কাজ করে (সামাজিক বিজ্ঞান) উভয়েরই আবিষ্কার এবং বর্ণনার জন্য সাংগঠনিক বিজ্ঞান অপরিহার্য। বিজ্ঞানের বিস্তৃত অর্থের বাইরেও," বিজ্ঞান" শব্দটি কখনও কখনও বিশেষভাবে মৌলিক বিজ্ঞান (গণিত এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞান) বোঝাতে । অনেক প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞান স্কুল বা অেনুষদ চিকিৎসা বা প্রকৌশল বিভাগকে পৃথক করে দেখা হ় । তাদের প্রতিটিকে একটিা প্রিকয়োগ বিজ্ঞান হিসাবে ধরা হয় । প্রাকৃতিক বিজ্ঞান প্রাকৃতিক বিজ্ঞান প্রকৃতির গতিধারার বর্ণনা, ভবিষ্যদ্বাণী এবং ব্যাখ্যার জন্য গবেষনামূলক প্রমাণ (পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা) নিয়ে কাজ করে। একে দুটি প্রধানভাগে ভাগ করা যায়: জীব বিজ্ঞান এবং পদার্থ বিজ্ঞান। এ দুটো শ্রেণীকে আরো বিশেষায়িত শ্রেণীতে বিভাজন করা হয়েছে। পদার্থ বিজ্ঞানকে পদার্থ, রসায়ন, জ্যোর্তিবিদ্যা এবং ভূবিদ্যা ইত্যাদি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়। আধুনিক প্রাকৃতিক বিজ্ঞান হল গ্রিক দার্শনিকদের প্রাকৃতিক দর্শনশাস্ত্রের আধুনিক রূপ। প্রাচীন গ্রিকের গ্যালিলিও, বেকন, ডেসকার্টেস এবং নিউটন বির্তক করেছিলেন পরীক্ষার পদ্ধতিগুলো বেশি গাণিতীক করা এবং বেশি বেশি পরীক্ষামূলক করার সুবিধা নিয়ে। তা সত্ত্বেও দার্শনিক দৃষ্টিকোন, অনুমান এবং পূর্বধারণাগুলোকে প্রায়শই অবহেলা করা হয় কিন্তু সেগুলো প্রাকৃতিক বিজ্ঞানে আবশ্যক। সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা যার মধ্যে আবিষ্কার বিদ্যাও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, বর্তমানে প্রাকৃতিক ইতিহাসে রূপ নিয়েছে। এই বিদ্যার আগমন ঘটে ১৬শ শতকে যখন সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে তথ্য সংগ্রহ ব্যবস্থা পদ্ধতি ব্যবহার করে গাছ, প্রাণী, খনিজসহ সব ধরনের বস্তুরই সঠিক তথ্য ভান্ডার গড়ে তোলা হয়। আজ "প্রাকৃতিক ইতিহাস" জনপ্রিয় শ্রোতাদের লক্ষ্য করে পর্যবেক্ষণমূলক বিবরণ প্রস্তাব করে সামাজিক বিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞান সমাজ এবং সমাজস্থ একক ব্যক্তিকে নিয়ে গবেষণা করে। এর বিভিন্ন শাখা রয়েছে যেমন: নৃবিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব, যোগাযোগ বিদ্যা, অর্থনীতি, ইতিহাস, মানবীয় ভূগোল, আইন, ভাষাবিজ্ঞান, রাষ্ট্রবিজ্ঞান, মনোবিজ্ঞান, জনস্বাস্থ্য, এবং সমাজবিজ্ঞান। তবে সামাজিক বিজ্ঞান শুধু এগুলোতেই সীমাবদ্ধ নয়। সামাজিক বিজ্ঞানীগন দার্শনিক তত্ত্বসমূহ ব্যক্তি এবং সমাজ গবেষনার সময় কাজে লাগাতে পারেন। যেমন ইতিবাচক বিজ্ঞানীরা প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের সদৃশ পদ্ধতি ব্যবহার করেন সমাজকে বোঝার জন্য এবং এই ভাবে বর্তমানের আধুনিক বিজ্ঞানের কঠোরতম সংজ্ঞাটিকে কাজে লাগান। অনুবাদপ্রধান সামাজিক বিজ্ঞানীগণ সামাজিক বির্তক অথবা প্রতীকী অনুবাদ ব্যবহার করেন পরীক্ষামূলক তত্ত্বের তুলনায় এবং এই ভাবে তারা বিজ্ঞানের বড় পরিসরের যে সংজ্ঞা রয়েছে তার আওতায় পড়েন। আধুনিক পাঠ্যক্রমের ব্যবহারিকক্ষেত্রে, গবেষনাকারীরা একই সময়ে বিভিন্ন পদ্ধতিগত পরীক্ষণ নিয়ে কাজ করেন যেমন একই সাথে পরিমানগত এবং গুণগত গবেষণা পদ্ধতি ব্যবহার করা। সামাজিক গবেষনার সংজ্ঞাটিও একক সত্ত্বার হয়ে উঠেছে কারণ বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিভিন্ন গবেষনাকারীরা তাদের গবেষনার কাজে সামাজিক গবেষনার উদ্দেশ্য এবং পদ্ধতি ব্যবহার করে থাকে। বিধিবদ্ধ বিজ্ঞান বিধিবদ্ধ বিজ্ঞান হল সাধারণ পদ্ধতিগুলোর বর্ণনা, বিশ্লেষন ও গবেষনাজনিত বিজ্ঞান। এর মধ্যে রয়েছে :গণিত, ব্যবস্থা তত্ত্ব, এবং তাত্ত্বিক কম্পিউটার বিজ্ঞান। বিধিবন্ধ বিজ্ঞান অন্য দুটি বিজ্ঞানের শাখার সাথে মিলে যায় কেননা এখানেও গবেষণা পরবর্তী জ্ঞানার্জনের জন্য পদ্ধতিগত ব্যবস্থা নেয়া হয় যেমন উদ্দেশ্য ঠিক করা, সর্তকভাবে ও পদ্ধতিগতভাবে গবেষণা করা। কিন্তু এগুলো পরীক্ষামূলক বিজ্ঞানের থেকে আলাদা কারন বিধিবদ্ধ বিজ্ঞান বিশেষভাবে ন্যায়িক কারনের উপর নির্ভর করে সারাংশ ধারণাগুলোকে যাচাই করতে, যার ফলে পরীক্ষামূলক প্রমাণের দরকার হয় না। বিধিবদ্ধ বিজ্ঞান হল প্রাথমিক/অগ্রীম পাঠ্য এবং এই বৈশিষ্ট্যের ফলে বিতর্ক রয়েছে যে আসলে এটি কোন বিজ্ঞান কিনা। তবুও বিধিবদ্ধ বিজ্ঞান প্রামানিক বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। ক্যালকুলাস তৈরি করা হয়েছিল পদার্থের গতি বোঝার জন্য। প্রাকৃতিক বিজ্ঞান এবং সামাজিক বিজ্ঞানের যে ক্ষেত্রগুলো গণিতের উপর নির্ভরশীল তা হল গাণিতিক পদার্থবিজ্ঞান, গাণিতিক রসায়ন, গাণিতিক জীববিজ্ঞান, গাণিতিক অর্থায়ন, এবং গাণিতিক অর্থনীতি। ফলিত বিজ্ঞান ফলিত বিজ্ঞান হল বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং জ্ঞান ব্যবহার করে বিশেষ উদ্দেশ্য সাধন করা। এর মধ্যে অনেক বিষয় অন্তর্ভুক্ত যেমন প্রকৌশল এবং চিকিৎসা বিজ্ঞান. প্রকৌশল বিদ্যা হল বৈজ্ঞানিক নীতিগুলো মেনে "রূপরেখা ও নকশা" করে কোন কিছু তৈরী করা যেমন ব্রীজ, টানেল, রোড, গাড়ি এবং বিল্ডিং ইত্যাদি। প্রকৌশল বিদ্যার মধ্যেই বিশেষ ভাগ রয়েছে যেগুলো বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্র নিয়ে কাজ করে যেমন ফলিত গণিত। চিকিৎসা হল কোন রোগীর দেহকে পরীক্ষণ, রোগ নির্ণয় এবং আঘাত সারিয়ে তোলা ও রোগ নিরাময় করা। সমসাময়িক চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে জৈবচিকিৎসা বিজ্ঞান, চিকিৎসা গবেষণা, জেনেটিক্স এবং রোগ বন্ধ করার চিকিৎসা প্রযুক্তি যেমন ঔষধ, চিকিৎসা যন্ত্রের ব্যবহার, সার্জারি এবং ঔষধ সেবার বাইরে অন্যান্য সেবা প্রদান। ফলিত বিজ্ঞানকে সাধারণ বিজ্ঞানের সাথে তুলনা করা হয় কিন্তু সাধারণ বিজ্ঞানের ক্ষেত্র হল প্রাকৃতিক ঘটনাবলির তত্ত্বগত এবং আইনগত উন্মেষজনিত বিষয়গুলি যার মাধ্যমে প্রাকৃতিক বিশ্বের নানা ঘটনা ব্যাখ্যা করা যায় এবং পূর্বাভাস প্রদান করা সম্ভব হয়। বৈজ্ঞানিক গবেষণা বৈজ্ঞানিক গবেষণাকে সাধারণ এবং ফলিত গবেষণা হিসেবে অভিহিত করা যায়। সাধারণ গবেষণা হল জ্ঞানের অন্বেষণ করা এবং ফলিত গবেষণা হল সাধারণ গবেষণা দ্বারা আহরিত জ্ঞান ব্যবহার করে কোন সমস্যার সমাধান খোজা। যদিও কিছু বৈজ্ঞানিক গবেষণা নির্দিষ্ট সমস্যাগুলির জন্য ফলিত গবেষণার মাধ্যমে করা হয়। তবুও আমাদের বোঝার বেশিরভাগ বিষয় সাধারণ গবেষণার উদ্দীপনামূলক উদ্যোগ থেকে আসে। এভাবে গবেষণার ফলসরূপ এটি আমাদের প্রযুক্তিগত অগ্রগতির দিকে নিয়ে যায় যা হয় অপরিকল্পিত হতে পারে আবার কখনও যা কল্পনাপ্রসূত ছিল না এমন ফলাফলের দিকে নিয়ে যায়। এই বিষয়টি মাইকেল ফ্যারাডে উল্লেখ্য করেছিলেন যখন তাকে প্রশ্ন করা হয়েছিল "মৌলিক গবেষণার ব্যবহার কী?" তিনি প্রতিক্রিয়া জানিয়েছিলেন যে: "স্যার, নতুন জন্মানো শিশুর ব্যবহার কী?"। উদাহরণস্বরূপ, মানুষের চোখের রড নামক কোষগুলোতে লাল আলোর প্রভাব সম্পর্কে গবেষণায় মনে হয়েছিল কোন বাস্তব উদ্দেশ্য নেই; অবশেষে, আবিষ্কার হয় যে আমাদের নাইট ভিশনে লাল আলো সমস্যা তৈরি করে না। সেই আবিষ্কার পরে জেট বিমান এবং হেলিকপ্টারের ককপিটে (এগুলো ছাড়াও অনেক কাজে ব্যবহৃত হয় যেমন অনুসন্ধান এবং উদ্ধারকারী দলের কাজে) লাল আলো ব্যবহার করা হয়। সর্বশেষে বলা যায়, অনেক সময় মৌলিক/সাধারণ গবেষণায় অপ্রত্যাশিত মোড় আসতে পারে এবং এমন কিছু ধারণা রয়েছে যাতে মনে করা হয় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিগুলো ভাগ্য আহরনের জন্য নির্মিত। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি বৈজ্ঞানিক গবেষণায় বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় যার মাধ্যমে উদ্দেশ্যগতভাবে প্রকৃতির ঘটনাগুলোকে এমনভাবে ব্যাখ্যা করা হয় যাতে পরবর্তীতে তা যে কেউ পুনরায় একইভাবে সংগঠিত করতে পারে। ব্যাখ্যাসহ একটি অনুমানকল্প দাড় করানো হয় যেখানে সবচেয়ে সাধারণ ব্যাখ্যাটিই হল সঠিক ব্যাখ্যা এমন নীতি (পার্সিমনি) গ্রহণ করা হয় এবং সাধারণত যে সকল প্রতিষ্ঠিত নীতি, আইন, পদ্ধতি রয়েছে তাদের সাথে অনুমানকল্পটি ভালভাবে খাপ খাবে এমনটা আশা করা হয়। নতুন যে ব্যাখ্যা দাড় করানো হয় তা সব অবস্থাতেই একই ফলাফল দেবে কিনা তা দেখা হয়। পূর্বকল্পিত ধারণাগুলি আগেই ব্যাখ্যা করতে হবে যাতে পরীক্ষার সময় তাতে জালিয়াতি করা হয়নি তা ধরা পড়ে। কোন ভবিষ্যদ্বাণীকে অস্বীকার করা অগ্রগতির প্রমাণ। প্রাকৃতিক ঘটনাগুলোর ক্ষেত্রে এটি অর্ধেক করা হয় কিন্তু গবেষনাকৃত বিষয়টির আওতায় নিয়ন্ত্রিত পরিবেশে তা পরীক্ষা করা যেতে পারে (পর্যবেক্ষণমূলক বিজ্ঞান যেগুলোতে ব্যবহৃত হয় যেমন ভূতত্ত্ব এবং জৌর্তিবিদ্যা সেখানে পূর্বঘোষিত পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে)। বিজ্ঞানের গবেষনায় কারন-প্রভাব সম্পর্ক নির্ণয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ (পারস্পরিক সম্পর্কের ভুলত্রুটি এড়াতে)। যখন কোন অনুমান অসন্তোষজনক প্রমাণিত হয় তখন এটি সংশোধন বা বাতিল করা হয়। যদি প্রকল্পটি পরীক্ষায় টিকে যায় তবে এটি একটি বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের কাঠামোতে রূপান্তরিত করা হয়। যা নির্দিষ্ট প্রাকৃতিক ঘটনাগুলির আচরণের বর্ণনা দেওয়ার জন্য একটি যৌক্তিক, যুক্তিযুক্ত এবং স্বতন্ত্র মডেল বা কাঠামো হিসাবে বিবেচিত হয়। একটি তত্ত্ব সাধারণত একটি প্রকল্পের চেয়ে অনেক বিস্তৃত আকারের আচরণকে ব্যাখ্যা করে। সাধারণভাবে, একটি তত্ত্ব বৃহৎ পরিসরের অনুমানকল্প নিয়ে গঠিত হতে পারে। সুতরাং একটি তত্ত্ব হল এক ধরনের অনুমানকল্প যা আরও ব্যাপক সংখ্যক অনুমানের/হাইপোথিসিসের ব্যাখ্যা করতে পারে। সেই সূত্রে, তত্ত্বগুলি যে বৈজ্ঞানিক নীতিমালা অনুসারে প্রণয়ন করা হয় অনুমানকল্পও তা অনুসরণ করে চলে। অনুমানকল্প পরীক্ষা করার পাশাপাশি বিজ্ঞানীরা একটি মডেল তৈরি করতে পারেন - যে মডেলের মাধ্যমে যৌক্তিক, ভৌত বা গাণিতিক দিক থেকে প্রকাশ করা সম্ভব হবে। এবং সেই মডেল দ্বারা হাইপোথিসিস/অনুমানকল্প তৈরি করা যাবে এবং পর্যবেক্ষণযোগ্য ঘটনাগুলির উপর ভিত্তি করে যা পরীক্ষা করা সম্ভব হবে। হাইপোথিসিস পরীক্ষা করার সময় বিজ্ঞানীদের একটি নিদির্ষ্ট ফলাফল অর্জনের প্রতি দুর্বলতা থাকতে পারে। তাই এটি নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ যে বিজ্ঞান সম্পূর্ণভাবে এই পক্ষপাতকে দূর করতে পারে। পক্ষপাত দূরীকরণের জন্য সতর্কভাবে পরীক্ষামূলক নকশা, স্বচ্ছতা, এবং পরীক্ষামূলক ফলাফলগুলির একটি সম্পূর্ণ পিয়ার রিভিউ প্রক্রিয়া চালানো যেতে পারে এবং সবশেষে উপসংহার করা যেতে পারে। পরীক্ষার ফলাফল ঘোষিত বা প্রকাশিত হওয়ার পর স্বাধীন গবেষকদের কাজ হল গবেষণাটি কীভাবে পরীক্ষা করা হয়েছিল তা আবার পরীক্ষা করা এবং ফলাফলগুলি নির্ভরযোগ্য কিনা তা নির্ণয় করা। পরীক্ষাগুলো পরিচালনার জন্য সাধারণ অনুশীলন ব্যবস্থা অনুসরণ করা যেতে পারে। তাদেরকে তখনই সম্পূর্ণভাবে গ্রহণ করা হবে যখন বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি দ্বারা পুরোপুরি পক্ষপাতমূলক ফলাফলের প্রভাবকে কমিয়ে আনা সম্ভব হবে। যাচাইযোগ্যতা জন জিম্যান উল্লেখ্য করেন যে, বৈজ্ঞানিক জ্ঞান তৈরিতে আন্তঃবিষয়ক যাচাইযোগ্যতা থাকা জরুরী। জিম্যান দেখান কীভাবে যুগ যুগ ধরে বিজ্ঞানীরা একে অন্যের নমুনা চিহ্নিত করতে পারেন। তিনি এই চিহ্নিত করার সক্ষমতাকে বলেন "বোধগম্য সম্মতি"। তারপর তিনি বোধগম্য সম্মতিকে সর্বসম্মতিতে পরিচালনা করেন যা সকল নির্ভরযোগ্য জ্ঞানের মাইলফলক। বিজ্ঞানে গণিতের ভূমিকা এবং সাংগঠনিক/আনুষ্ঠানিক বিজ্ঞান গণিত বিজ্ঞানের জন্য অত্যাবশ্যক । বিজ্ঞান ক্ষেত্রে গণিতের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হল এটি বৈজ্ঞানিক মডেলকে প্রকাশের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । পর্যবেক্ষণ এবং পরিমাপ সংগ্রহ, পাশাপাশি প্রকল্প রচনা করা এবং পূর্বাভাস প্রদানের ক্ষেত্রে প্রায়ই ব্যাপকভাবে গণিত ব্যবহারের প্রয়োজন হয় । উদাহরণস্বরূপ, পাটিগণিত, বীজগণিত, জ্যামিতি, ত্রিকোণমিতি, এবং ক্যালকুলাস সব পদার্থবিজ্ঞানের জন্য অপরিহার্য । কার্যত বিজ্ঞানের প্রতিটি শাখায় গণিতের প্রয়োগ করা হয়, যেমন "বিশুদ্ধ" এলাকা হিসাবে "তত্ত্ব" এবং টপোলজির কথা বলা যায় । পরিসংখ্যানগত পদ্ধতিগুলি, যা বিজ্ঞানীদের গাণিতিক কৌশল অবলম্বন করে বিশ্বস্ততার সাথে পরীক্ষামূলক ফলাফলগুলির পরিমাণ মূল্যায়ন করার অনুমতি দেয় । পরিসংখ্যানগত বিশ্লেষণটি প্রাকৃতিক বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান উভয় ক্ষেত্রেই একটি মৌলিক ভূমিকা পালন করে। কম্পিউটেশনাল বিজ্ঞান বাস্তব বিশ্বে পরিস্থিতি অনুকরণ করার জন্য কম্পিউটিং শক্তি প্রয়োগ করে যা গঠনগত গণিতের তুলনায় বৈজ্ঞানিক সমস্যাজনিত বিষয়গুলো খুব ভালভাবে বোঝার জন্য সাহায্য করতে পারে । সোসাইটি ফর ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড অ্যাপ্লাইড ম্যাথম্যাটিকসের মতে, গণিতের জ্ঞান বৈজ্ঞানিক প্রবর্তনের তত্ত্ব এবং গবেষণার মতোই এখন গুরুত্বপূর্ণ বিষয় । গণিতবিদ ও দার্শনিকদের মধ্যে বিবর্তিত তত্ত্বের উত্থান এবং গণিতের ভিত্তিগুলির জন্য এটির ব্যবহারের জন্য বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে আনুষ্ঠানিক যুক্তিবিজ্ঞানের গবেষণায় অনেক গুরুত্ব দেওয়া হয়েছিল । উল্লেখযোগ্য গণিতজ্ঞ এবং দার্শনিক যারা এই ক্ষেত্রে অবদান রেখেছেন তাদের মধ্যে রয়েছেন গটলব ফ্রেজ,জিউসেপ পেয়ানো,জর্জ বুল,আর্নেস্ট জেরমেলো, আব্রাহাম ফ্রাংকেল,ডেভিড হিলবার্ট, বারট্রান্ড রাসেল এবং আলফ্রেড হোয়াইটহেড। প্যানানো গণিতের মতো বিভিন্ন স্বতন্ত্র সিস্টেমগুলি, যেমন- জেরেমো-ফেনেকেলের সেটমার্ক পদ্ধতি এবং প্রিন্সিপিয়া ম্যাথমেটিকা​ ব্যবস্থার পাশাপাশি গণিতের ভিত্তি প্রমাণ করার জন্য অনেকের ধারণা ব্যবহার করা হয়েছিল । যাইহোক, ১৯৩১ সালে কার্ট গডেলের অসম্পূর্ণতা তত্ত্বের প্রকাশের সঙ্গে সঙ্গে তাদের বেশিরভাগ প্রচেষ্টা হ্রাস পেয়েছিল।গণিত,দর্শন ও কম্পিউটার বিজ্ঞানের শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ে আজও সাংগঠনিক যুক্তিবিদ্যা অধ্যয়ন করে। উদাহরণস্বরূপ, বুলিয়ান বীজগণিত দ্বারা সমস্ত আধুনিক কম্পিউটারগুলি কার্যকরী হয় এবং এই শাখার জ্ঞান প্রোগ্রামারদের জন্য অত্যন্ত দরকারী। বিজ্ঞানের দর্শন বিজ্ঞানীরা সাধারণভাবে কিছু মৌলিক ধারণা ধরে কোন বৈজ্ঞানিক গবেষনার জন্য বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি ঠিক করেন। এগুলো হল: (১) প্রথমত সকল পর্যবেক্ষকদের দ্বারা স্বীকৃত একটি প্রকৃত বাস্তবতা (কোন প্রভাবক ছাড়া) থাকতে হবে ; (২) এই প্রকৃত বাস্তবতা প্রাকৃতিক আইন দ্বারা পরিচালিত হতে হবে; (৩) এই আইনগুলি পদ্ধতিগত পর্যবেক্ষণ ও গবেষণার মাধ্যমে আবিষ্কৃত হতে পারে। বিজ্ঞানের দর্শন এই অন্তর্নিহিত অনুমান কি বোঝায় এবং তারা বৈধ কিনা তা গভীরভাবে অনুসন্ধান করে। যে বিশ্বাসের কারনে মনে করা হয় যে বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব অবশ্যই অধিবিদ্যাকে প্রতিনিধিত্ব করে তাকে বাস্তববাদ বলে। একে অবাস্তববাদ দ্বারা বিপরীতভাবে দেখা যেতে পারে, যেখানে বলা হয় বিজ্ঞানের সাফল্য শুধুমাত্র সঠিকতার উপর নির্ভর করে না বিশেষত সেই সমস্ত বস্তুর ক্ষেত্রে যেগুলো চোখে দেখা যায় না যেমন ইলেকট্রন। অবাস্তববাদীতার আর একটি রূপ হল আদর্শবাদ, যেখানে মনে করা হয় যে মন বা চেতনা হল সবচেয়ে মৌলিক সারমর্ম, এবং প্রতিটি মন তার নিজস্ব বাস্তবতা উৎপন্ন করে।[g] একটি আদর্শবাদী জগতের দৃষ্টিভঙ্গি হল "যা একটি মনের জন্য যা সত্য, তা অন্য মনের জন্য সত্য নাও হতে পারে"। বিজ্ঞানের দর্শনের মধ্যে চিন্তার বিভিন্ন ধাপ আছে । সবচেয়ে জনপ্রিয় ধাপ হচ্ছে প্রয়োগবাদ[h], যাতে ধারণা করা হয় যে কোন জ্ঞান পর্যবেক্ষণ প্রক্রিয়ায় লব্ধ হয় এবং বৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলো এই পর্যবেক্ষণ থেকে সাধারণীকরণের ফলাফল হিসাবে তৈরী হয়।[124] প্রয়োগবাদ সাধারণত inductivism কে অন্তর্ভুক্ত করে, একটি পজিশন যা ব্যাখ্যা করতে পারে যে সাধারণ তত্ত্বগুলি পরিমাপের সংখ্যা দ্বারা মানুষ তাকে যথাযথভাবে যাচাই করতে পারবে এবং সেইজন্য বৈজ্ঞানিক তত্ত্বগুলি নিশ্চিত করার জন্য উপলব্ধ প্রামাণিক প্রমাণগুলির সীমাবদ্ধ পরিমাণ উপলব্ধ করা হয়। এটি অপরিহার্য কারণ এই তত্ত্বগুলির পূর্বাভাসের সংখ্যা অসীম, যার অর্থ হল যে কেবলমাত্র নিখুঁত লজিক ব্যবহার করে প্রমাণের সীমাবদ্ধ পরিমাণ থেকে তা জানা যাবে না । প্রয়োগবাদের অনেক সংস্করণ বিদ্যমান রয়েছে, যার মধ্যে প্রধানত বেইসিয়ানিজম এবং হাইপোথেটিকো ন্যায়ত পদ্ধতি অন্যতম । প্রয়োগবাদ যুক্তিবাদের বিপরীতে দাঁড়িয়েছে, অবস্থানটি মূলত ডেসকার্টেসের সাথে সম্পর্কযুক্ত, যা এই ধারণাকে ধারণ করে যে মানব বুদ্ধি দ্বারা জ্ঞান তৈরি হয় পর্যবেক্ষণের দ্বারা নয় । বিংশ শতাব্দীর দিকে জটিল যুক্তিবাদ বিজ্ঞানের বৈপরীত্যে অবস্থান নিয়েছিল তা প্রথম সংজ্ঞায়িত হয়েছিল অস্ট্রিয়ান-ব্রিটিশ দার্শনিক কার্ল পপার দ্বারা । পপার তত্ত্ব এবং পর্যবেক্ষণের মধ্যে সংযোগের বিষয়টিকে প্রয়োগবাদ যেভাবে বর্ণনা দেয় তা পরিত্যাগ করেছিলেন । তিনি দাবি করেন যে তত্ত্বগুলি পর্যবেক্ষণ দ্বারা উৎপন্ন হয় না, তবে ঐ পর্যবেক্ষণ তত্ত্বের আলোকে তৈরি করা হয় এবং একমাত্র উপায়টি পর্যবেক্ষণ দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে যখন এটির সাথে বিরোধও একসাথে আসে । পপার প্রস্তাব করেছিলেন যে বৈজ্ঞানিক তত্ত্বের ল্যান্ডমার্ক হিসাবে মিথ্যাকে যাচাইয়ের সাথে যাচাইযোগ্যতাকে প্রতিস্থাপিত করা দরকার এবং পরীক্ষামূলক পদ্ধতি হিসাবে জালিয়াতির সঙ্গে ন্যায়তাকে প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে । নিশ্চয়তা এবং বিজ্ঞান বৈজ্ঞানিক তত্ত্ব হল পরীক্ষামূলক এবং নতুন প্রমাণ উপস্থাপন করা হলে এটি সর্বদা জালিয়াতিকে উন্মুক্ত করে দেয় । অর্থাৎ কোন তত্ত্বকে কখনোই কঠোরভাবে নির্দিষ্ট বা নিশ্চিত বলে বিবেচিত হয় না কারণ বিজ্ঞান ফ্যালিবিলিজমের ধারণাকে গ্রহণ করে। বিজ্ঞানের দার্শনিক কার্ল পপার সুনির্দিষ্টভাবে সত্যকে থেকে নিশ্চিতকে আলাদা করেছিলেন । তিনি লিখেছেন যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান "সত্যের সন্ধানে গঠিত", কিন্তু এটি "নিশ্চিততার সন্ধান করেনা ...মানুষের সমস্ত জ্ঞান ভ্রমপ্রবণ এবং সেইজন্য তা অনিশ্চিত।" নতুন বৈজ্ঞানিক জ্ঞান খুব কমই আমাদের বোঝার মধ্যে পরিবর্তন নিয়ে আসে । মনস্তাত্ত্বিক কিথ স্ট্যানোভিচের মতে, "বিপ্লব" শব্দটি মিডিয়াগুলির দ্বারা অত্যধিক ব্যবহৃত হতে পারে যার ফলে জনসাধারণ কল্পনা করে যে বিজ্ঞান ক্রমাগত প্রতিটা মিথ্যাকে বলে সত্য বলে প্রমাণ করে । যদিও বিখ্যাত আপেক্ষিকতার তত্ত্ব যা সম্পূর্ণ পুনর্বিবেচনার প্রয়োজন বলে মনে করে যাকে চরম ব্যতিক্রম বলা যায় । বিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখায় বিভিন্ন গবেষকরা গবেষণার মাধ্যমে স্নাতকোত্তর জ্ঞান অর্জন করেন; এটি অনেকটা আরোহণ করার তুলনায় লাফ দেয়া বুঝায় । তত্ত্বগুলি ভালোভাবে পরীক্ষা এবং যাচাই করা হয়েছে কিনা, সেইসাথে বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়ের দ্বারা তারা স্বীকৃতি পেয়েছে কিনা তার উপর ভিত্তি করে তারা পরিবর্তিত হয় । উদাহরণস্বরূপ, সূর্যকেন্দ্রিক তত্ত্ব, বিবর্তন তত্ত্ব, আপেক্ষিকতা তত্ত্ব এবং জীবাণু তত্ত্ব এখনও "তত্ত্ব" নাম বহন করে যদিও প্রথাগতভাবে এটি বাস্তবিক বলে মনে করা হয় । দর্শনশাস্ত্র ব্যারি স্ট্রাউড যোগ করেন যে, যদিও "জ্ঞান" এর জন্য সর্বোত্তম সংজ্ঞাটি প্রতিযোগিতার সম্মুখীন হয়েছে এবং একটি ভুলটি সঠিক হওয়ার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ বলে বিবেচিত হচ্ছে । তদ্ব্যতীত, বিজ্ঞানীরা সঠিক বৈজ্ঞানিক দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করে এমনকি সত্যের পরেও তারা তা নিয়ে সন্দেহ করবে । ফ্যাল্লিবিলিস্ট সি.এস. পিয়ারস যুক্তি দেন যে তদন্তটি সঠিক সন্দেহ সমাধানের জন্য সংগ্রাম এবং কেবল নিছক দ্বন্দ্বপূর্ণ, মৌখিক বা অতিপ্রাকৃত সন্দেহের ফলশ্রুতি । কিন্তু অনুসন্ধানকারীকে সাধারণ জ্ঞানের পরিবর্তে প্রকৃত সন্দেহ অর্জন করার চেষ্টা করতে হবে । তিনি মনে করেন যে সফল বিজ্ঞানগুলি কোন একক শৃঙ্খলার অনুভূতিতে বিশ্বাস করে না (তারা দুর্বলতম লিঙ্কের চেয়ে শক্তিশালী নয়) কিন্তু একত্রে সংযুক্ত বহুবিধ এবং বিভিন্ন আর্গুমেন্টের ক্যাবলের সাথে তারা যুক্ত থাকে । বৈজ্ঞানিক সাহিত্য বৈজ্ঞানিক সাহিত্যের একটি বিশাল পরিসর প্রকাশিত হয়েছে । বৈজ্ঞানিক জার্নালগুলি বিশ্ববিদ্যালয় এবং অন্যান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পরিচালিত গবেষণার ফলাফলগুলি ডকুমেন্ট আকারে প্রকাশ করে, যা বিজ্ঞানের একটি আর্কাইভ রেকর্ড হিসাবে কাজ করে। প্রথম বৈজ্ঞানিক পত্রিকা জার্নাল দেসভভানস দর্শনশাস্ত্র অনুসরণ করে ১৬৬৫ সালে প্রকাশনা শুরু করেছিল । সেই সময় থেকে সক্রিয় সাময়িকীর মোট সংখ্যা ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেয়েছে । ১৯৮১ সালে প্রকাশ্যে প্রকাশিত বিজ্ঞানী ও কারিগরি জার্নালগুলির সংখ্যা ছিল ১১,৫০০ । মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ন্যাশনাল চিকিৎসা লাইব্রেরি বর্তমানে ৫,৫১৬ জার্নালকে সূচিত করে যা জীবন বিজ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়ের উপর নিবন্ধ রয়েছে । যদিও জার্নালগুলি ৩৯ টি ভাষায় হয়, তবুও সূচকের ১১২ শতাংশ নিবন্ধ ইংরেজিতে প্রকাশিত হয় । বেশিরভাগ বৈজ্ঞানিক পত্রিকা একক বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করে এবং সেই ক্ষেত্রের মধ্যেই গবেষণা প্রকাশ করে; গবেষণা সাধারণত একটি বৈজ্ঞানিক কাগজের আকারে প্রকাশ করা হয় । আধুনিক সমাজে বিজ্ঞানের এত স্পর্শকাতর হয়ে উঠেছে যে সাধারণভাবে বিজ্ঞানীদের কাছে কৃতিত্ব, খবর এবং যোগাযোগ করার জন্য এটি ব্যাপকভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে বিবেচিত হয়। বিজ্ঞানের ম্যাগাজিন যেমন নিউ সায়েন্টিস্ট, সায়েন্স এন্ড ভিই, এবং বৈজ্ঞানিক আমেরিকান অনেক বেশি পাঠকের প্রয়োজনগুলি পূরণ করে এবং গবেষণার কয়েকটি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার এবং অগ্রগতি সহ গবেষণার জনপ্রিয় অঞ্চলের একটি অ-টেকনিকাল সারসংক্ষেপ প্রদান করে । ব্যবহারিক প্রভাব মৌলিক বিজ্ঞানের আবিষ্কারগুলো পৃথিবীর ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত করে। উদাহরণসরূপ: {| class="wikitable" style="font-size:90%" |- ! গবেষণার বিষয় !! বাস্তবক্ষেত্রে প্রভাব |- | স্থির তড়িৎ, চুম্বকত্ব (সি ১৬০০)তড়িৎ প্রবাহ (১৮শ শতকে) | প্রতিটি বৈদ্যুতিক জিনিসপত্রে, ডায়নামো, বৈদ্যুতিক শক্তির স্টেশনগুলোতে, আধুনিক ইলেক্ট্রনিক্স যার মধ্যে রয়েছে বৈদ্যুতিক বাতি, টেলিভিশন, তাপ উৎপাদক, চৌম্বকীয় টেপ, উচ্চমাত্রার স্পিকার, কম্পাস, আলোক রড, ব্রেইন সিমুলেশন ইত্যাদি |- | অপবর্তন (১৬৬৫) || সব ধরনের অপটিকস: ফাইবার অপটিক ক্যাবল, আধুনিক আন্তঃমহাদেশীয় যোগাযোগে, ক্যাবল টিভি এবং ইন্টারনেট সংযোগে। |- | রোগের জীবানু তত্ত্ব (১৭০০) || পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা যা রোগের বিস্তার রোধ করে, এন্টিবডি, রোগের নির্ণয় এবং ক্যান্সার রোধী থেরাপি সহ নানাবিধ রোগের চিকিৎসা |- | টিকা (১৭৯৮) || যা বর্তমানে বহু সংক্রামক ব্যধির প্রকোপ সম্পূর্ণ প্রতিরোধে ব্যবহৃত হয়। স্মলফক্স, চিকেন ফক্স, হাম, রুবেলা, ধনুস্টংকার ইত্যাদি |- | আলোক-বিভব ক্রিয়া (১৮৩৯) || সৌর কোষ (১৮৮৩), যা থেকে বর্তমানে সৌর শক্তি, সৌর শক্তি চালিত ক্যালকুলেটর, ঘড়ি, বসতবাড়ির বিদ্যুত ব্যবস্থা চালনা করা হয়। |- | বিশেষ আপেক্ষিকতা (১৯০৫) এবং সাধারণ আপেক্ষিকতা (১৯১৬) || স্যাটেলাইট ভিত্তিক প্রযুক্তি যেমন বিশ্বজনীন অবস্থান-নির্ণায়ক ব্যবস্থা (১৯৭৩), স্যাটনেভ এবং কৃত্রিম উপগ্রহভিত্তিক যোগাযোগ |- | রেডিও কম্পাঙ্ক (১৮৮৭) || রেডিও টেলিফোন ছাড়াও অসংখ্যভাবে ব্যবহৃত হয় রেডিও ও টিভি ইত্যাদিতে। অন্যান্য ব্যবহারগুলো হল জরুরি সেবা, রাডার দিয়ে দিকনির্ণয় এবং আবহাওয়ার পূর্বাভাস, চিকিৎসাসেবায়, জ্যোর্তিবিজ্ঞানে, তারবিহীন যোগাযোগে, ভূপদার্থ এবং নেটওয়ার্কের প্রযুক্তিতে। রেডিওকে আরো মাইক্রোওয়েভে রূপ দেয়া হয় যা বিশ্বব্যপি দৈনন্দিন কাজে যেমন খাদ্য গরম করার জন্য ব্যবহার করা হয়। |- | তেজস্ক্রিয়তা (১৮৯৬) এবং প্রতিপদার্থ (১৯৩২) | ক্যান্সার চিকিৎসায় (১৮৯৬), রেডিওমেট্রিক ডেটিং (১৯০৫), নিউক্লিয়ার বিক্রিয়ার ধারকs (১৯৪২) এবং পারমাণবিক অস্ত্র (১৯৪৫), খনিজ অনুসন্ধান, পিইটি স্কেন (১৯৬১), এবং চিকিৎসা গবেষনায়। |- |রঞ্জন রশ্মি (১৮৯৬)|| চিকিৎসাক্ষেত্রের ছবি, যাতে রয়েছে সিটি স্ক্যান. |- | কেলাসবিজ্ঞান এবং কোয়ান্টাম বলবিজ্ঞান (১৯০০) | অর্ধপরিবাহী যন্ত্রসমূহ (১৯০৬) যা থেকে আধুনিক কম্পিউটিং এবং টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা, মোবাইল ফোন, এলইডি ল্যাম্প এবং লেজার। |- |প্লাস্টিক (১৯০৭)||শিল্প ও দৈনন্দিন জীবনে প্লাস্টিকের রয়েছে বহু ব্যবহার |- |অ্যান্টিবায়োটিক (১৮৮০ দশক, ১৯২৮) || সালভারসান, পেনিসিলিন, ডক্সিসাইক্লিন ইত্যাদি |- |পারমানবিক চৌম্বকীয় অনুরণন (১৯৩০ দশকে) || পারমানবিক চৌম্বকীয় অনুরণন বর্নালী (১৯৪৬), চৌম্বকীয় অনুরণন প্রতিচ্ছবি (১৯৭১), কার্যক্ষম চৌম্বকীয় অনুরণন প্রতিচ্ছবি (১৯৯০ দশকে). |} প্রতিদ্বন্দ্বিতা প্রতিলিপি সংকট প্রতিলিপি সংকট একটি চলমান পদ্ধতিগত সংকট যা প্রাথমিকভাবে সামাজিক এবং জীব বিজ্ঞানকে প্রভাবিত করে। বিশেষজ্ঞরা দেখেছেন যে অনেক গবেষনার ফলাফলই বাস্তবক্ষেত্রে প্রতিলিপি করা বা পুনরুৎপাদন করা কঠিন তা সে একক কোন গবেষক বা যারা শুরুতে গবেষণা করেছিলেন তারাও হতে পারে। এই সমস্যার সচেতনার থেকে জানা যায় এটি অনেক আগে থেকেই শুরু হয়েছিল প্রায় ২০১০ দশকের শুরু থেকেই। প্রতিলিপি সংকট অন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে প্রতিনিধিত্ব করে তা হল মেটাবিজ্ঞান (বিজ্ঞানকেই পরীক্ষার পদ্ধতি)। মেটাবিজ্ঞানের উদ্দেশ্য হল সমস্ত বৈজ্ঞানিক গবেষণার মানোন্নয় করার পাশাপাশি কম বর্জ্য নিঃসরণ করা। ফ্রিন্জ বিজ্ঞান, ছদ্মবিজ্ঞান, এবং জাঙ্ক বিজ্ঞান এটি গবেষণায় বা অনুমানমূলক একটি ক্ষেত্র যা বিজ্ঞান হিসাবে বৈধতা দাবি করার চেষ্টা করা সত্ত্বেও তারা বিজ্ঞানের মর্যাদা অর্জন করতে সক্ষম হবে না কখনও কখনও তাদেরকে ছদ্মবিজ্ঞান, fringe বিজ্ঞান, বা জাঙ্ক বিজ্ঞান হিসাবে উল্লেখ করা হয়। পদার্থবিদ রিচার্ড ফাইনম্যান "cargo cult science" শব্দটি ব্যবহার করেছেন তাদের ক্ষেত্রে যে গবেষকরা বিশ্বাস করেন যে তারা বিজ্ঞানের কাজ করছেন কারণ তাদের কার্যক্রমগুলিতে বিজ্ঞানের বাহ্যিক চেহারা রয়েছে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে" নির্গত সততার "অভাব রয়েছে যার ফলে তাদের ফলাফল অক্ষরে অক্ষরে মূল্যায়ন করা যায় । বিভিন্ন ধরনের বাণিজ্যিক বিজ্ঞাপন হাইপ থেকে জালিয়াতি পর্যন্ত এই বিভাগগুলির মধ্যে পড়তে পারে । বৈজ্ঞানিক বিতর্কে সকল পক্ষের উপর রাজনৈতিক বা মতাদর্শগত পক্ষপাতের একটি উপাদানও থাকতে পারে। কখনও কখনও গবেষণায় একে "অপবিজ্ঞান" হিসাবে চিহ্নিত করা যেতে পারে, যা গবেষণায় ভালভাবে ধারণা করা যায় কিন্তু প্রকৃতপক্ষে এটি আসলেই ভুল, অপ্রচলিত, অসম্পূর্ণ, বা বৈজ্ঞানিক ধারণাগুলির সরলীকৃত ব্যাখ্যা । "বৈজ্ঞানিক অপব্যবহার" শব্দটি এমন পরিস্থিতিতে বোঝায় যখন গবেষকরা ইচ্ছাকৃতভাবে তাদের প্রকাশিত তথ্যকে ভুলভাবে উপস্থাপন করেছেন বা ভুলভাবে ভুল ব্যক্তির কাছে একটি আবিষ্কারের জন্য ইচ্ছাকৃতভাবে তাকে কৃতিত্ব দিয়েছেন । বৈজ্ঞানিক সমাজ বৈজ্ঞানিক সমাজ হল সকল বিজ্ঞানীদের (নিজ নিজ ক্ষেত্র এবং প্রতিষ্ঠানে থেকেও) পারস্পরিক সহযোগীতা ও যোগাযোগের একটি দল। বিজ্ঞানীগণ বিজ্ঞানীগণ হল ব্যক্তিবিশেষ বা দল বিশেষ যারা তার বা তাদের পছন্দের বিষয়ের উপর বৈজ্ঞানিক গবেষণা পরিচালনা করেন। ১৮৩৩ সালে বিজ্ঞানি শব্দটি প্রথম ব্যবহার করেন উইলিয়াম হিওয়েল। আধুনিক সময়ে অনেক পেশাদার বিজ্ঞানীকে শিক্ষাদানের আদলে প্রশিক্ষণ দেয়া হয় এবং প্রশিক্ষণ শেষে তারা একটি শিক্ষাগত ডিগ্রি লাভ করেন যার মধ্যে সবোর্চ্চ হল ডক্টরেট ডিগ্রি যেমন দর্শনশাস্ত্রে ডক্টরেট হল পিএইটডি। অনেক বিজ্ঞানিই তাদের ক্যারিয়ার বেছে নেন বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে, শিল্পে, সরকারি খাতে এবং অলাভজনক প্রতিষ্ঠানে। বিজ্ঞানীরা বাস্তবতার সম্পর্কে প্রচন্ড আগ্রহী হন। কেউ কেউ বিজ্ঞানের জ্ঞানকে স্বাস্থ্যসেবা উন্নয়নে, জাতীয় উন্নয়নে, পরিবেশ বা শিল্পের উন্নয়নে ব্যবহার করেন। অন্যরা সম্মান এবং স্বীকৃতির জন্য কাজ করেন। নোবেল পুরস্কার, হল এরূপ সবোর্চ্চ সম্মানজনক পুরস্কার যা সর্বস্বীকৃত। এটি প্রতিবছর দেয়া হয়। যে সব বিজ্ঞানীরা বর্তমান বিজ্ঞানকে গবেষণার মাধ্যমে আরো উচ্চতর পর্যায়ে নিয়ে গেছেন সেই সকল বিজ্ঞানীদের থেকে বাছাই করে সেরা আবিষ্কারগুলোকে পুরুষ্কৃত করা হয়। এটি ঔষধ, পদার্থ, রসায়ন এবং অর্থনীতি খাতে গবেষণা করা বিজ্ঞানীদের দেয়া হয়।. বিজ্ঞানে নারী বিজ্ঞানের ইতিহাসে ঐতিহাসিকভাবে একটি পুরুষ-আধিপত্যের ক্ষেত্র রয়েছে যদিও এর মধ্যে কিছু উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম রয়েছে । বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নারীরা অনেক বৈষম্যের স্বীকার হয়েছিল । তবে নারীরা সমাজের অন্যান্য অঞ্চলে যেমন পুরুষ-শাসিত সমাজের প্রায় সব কাজই করেছিলেন । তাছাড়া তাদের কাজের কৃতিত্বকে প্রায়ই অস্বীকার করা হত । উদাহরণস্বরূপ, ক্রিস্টিন লেড (১৮৪৭-১৯৩০) পিএইচডি প্রোগ্রামে প্রবেশ করতে সক্ষম হয়েছিলেন "সি লেড"; ক্রিস্টিন "কিটটি" লেড ১৮৮২ সালে সব প্রয়োজনীয়তা সম্পন্ন করেছিলেন কিন্তু ১৯২৬ সালে ডিগ্রি লাভ করেছিলেন । তার কর্মজীবনের পর তিনি লজিক, বীজগণিত (সত্য সারণি), রঙ দর্শন, এবং মনস্তত্ত্ব নিয়েও গবেষণা করেছিলেন । তার কাজগুলি উল্লেখযোগ্য গবেষক Ludwig Wittgenstein এবং চার্লস স্যান্ডার্স Peirce মত বিখ্যাত হয়েছিল । বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নারীদের কৃতিত্বকে গার্হস্থ্য গোলকের মধ্যে শ্রমিক হিসাবে অভিহিত করা হত । বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে নারীর সক্রিয় নিয়োগ এবং লিঙ্গ নিয়ে প্রাতিষ্ঠানিক বৈষম্য দূর করার ফলে নারী বিজ্ঞানীর সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে । তবে বেশিরভাগ লিঙ্গ বৈষম্য কিছু ক্ষেত্রে থেকেই গেছে ; অর্ধেকের ও বেশি নতুন জীববিজ্ঞানী হচ্ছে নারী, আর যেখানে ৮০% পিএইচডি পুরুষ পদার্থবিদের দেওয়া হয় । নারীবাদীরা দাবি করে যে লিঙ্গ বৈষম্যের পরিবর্তে সংস্কৃতির ফলাফলের পার্থক্যই হল মূল বিষয় । কিছু পরীক্ষায় দেখা গেছে যে বাবা-মা মেয়েদের চেয়ে ছেলেদের উপর বেশি গুরুত্বারোপ করে যার প্রভাব তাদেরকে গভীরভাবে এবং যুক্তিযুক্তভাবে প্রতিফলিত করে। বিংশ শতকের প্রথম দিকে আমেরিকাতে ৫০.৩% স্নাতক ডিগ্রি, ৪৫.৬% মাস্টার ডিগ্রী এবং বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের ক্ষেত্রে ৪০.৭% পিএইচডি ডিগ্রি লাভ করে । নারীদের অর্ধেকেরও বেশি তিনটি ক্ষেত্রে ডিগ্রি অর্জন করে, যেমন- মনোবিজ্ঞানে (প্রায় ৭০%), সামাজিক বিজ্ঞানে (প্রায় ৫০%) এবং জীববিজ্ঞানে (প্রায় ৫০-৬০%)। যাইহোক, যখন শারীরিক বিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব, গণিত, প্রকৌশল এবং কম্পিউটার বিজ্ঞান আসে, তখন মহিলাদের অর্ধেকেরও কম ডিগ্রি অর্জন করে । যাইহোক, লাইফস্টাইল পছন্দের বিষয়টি বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে । কর্মক্ষেত্রের ভারসাম্য জনিত সমস্যাগুলির কারণে ছোট শিশুদের সঙ্গে মেয়েদের বয়স ২৮% কম থাকে, এবং গ্র্যাজুয়েট স্কুলের কোর্সে ছাত্রীদের স্নাতক আগ্রহের হার নাটকীয়ভাবে হ্রাস পায়, যদিও তাদের পুরুষ সহকর্মীদের ক্ষেত্রে তা অপরিবর্তিত রয়ে যায় । প্রতিষ্ঠান রেনেসাঁসকালীন সময় থেকে বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারা ও গবেষণার প্রচার এবং গবেষণার জন্য শিক্ষিত সমাজগুলি বিদ্যমান ছিল । প্রাচীনতম জীবিত সংস্থাটি ইতালির অ্যাক্রেডেমিয়া দে লিন্সি যা ১৬০৩ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । বিজ্ঞানের সাথে সংশ্লিষ্ট জাতীয় একাডেমী কয়েকটি দেশে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল । যেমন-১৬৬০ সালে ব্রিটিশ রয়্যাল সোসাইটির এবং ১৬৬৬ খ্রিষ্টাব্দে ফ্রান্সের অ্যাকাডেমি ডি সাইন্স যাত্রা শুরু করেছিল । ইন্টারন্যাশনাল কাউন্সিল ফর সায়েন্সের মতো আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক সংগঠনগুলি বিভিন্ন জাতির বিজ্ঞানীদের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য গঠিত হয়েছে। অনেক সরকার বৈজ্ঞানিক গবেষণার সমর্থনে সংস্থাগুলিকে উৎসর্গ করেছে । বিশিষ্ট বৈজ্ঞানিক সংস্থায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশন, আর্জেন্টিনায় ন্যাশনাল সায়েন্টিফিক অ্যান্ড টেকনিকাল রিসার্চ কাউন্সিল, অস্ট্রেলিয়ায় সিএসআইআরও, ফ্রান্সের সেন্ট্রাল ন্যাশনাল দে লা রিচার্স সায়েন্টিফিক, ম্যাক্স প্লাংক সোসাইটি এবং জার্মানিতে ডয়েশ ফোর্শংজেমিনসচফ্ট এবং স্পেনের সিএসআইসি অন্যতম। বিজ্ঞান এবং জনসাধারণ বিজ্ঞান নিয়ে জনসচেতনতা, যোগাযোগের সাথে বিজ্ঞানের সম্পর্ক, বিজ্ঞান উৎসব, নাগরিক বিজ্ঞান, বিজ্ঞান সাংবাদিকতা, বিজ্ঞান আউটরিচ,গণ বিজ্ঞান, এবং জনপ্রিয় বিজ্ঞানের মতো জনসাধারণ এবং বিজ্ঞান/বিজ্ঞানীর মধ্যে যোগাযোগের জন্য বিভিন্ন কর্মকান্ডগুলি উন্নত করা হয়েছে। বিজ্ঞান নীতি বিজ্ঞান নীতি হচ্ছে জনসাধারণের নীতির সাথে সম্পর্কিত একটি ক্ষেত্র যা বৈজ্ঞানিক উদ্যোগের আচরণকে প্রভাবিত করে তাছাড়া গবেষণা তহবিল সহ অন্যান্য জাতীয় নীতির লক্ষ্যসমূহ যেমন বাণিজ্যিক পণ্য উন্নয়ন, অস্ত্র উন্নয়ন, স্বাস্থ্যসেবা এবং পরিবেশ উন্নত করার জন্য প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন পর্যবেক্ষণ অন্যতম । বিজ্ঞান নীতি জনসাধারণের নীতিগুলি উন্নয়নের জন্য বৈজ্ঞানিক জ্ঞান এবং ঐক্যমত্য প্রয়োগের আইনটিকেও উল্লেখ করে । এইভাবে বিজ্ঞান নীতি বিষয়গুলি এমন সমস্ত বিষয়গুলির সাথে সম্পর্কিত হয় যা প্রাকৃতিক বিজ্ঞানকে অন্তর্ভুক্ত করে । জনগণের নীতিমালা অনুযায়ী বিজ্ঞানের নীতিমালার প্রধান লক্ষ্য হল জনগণের কল্যাণে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি জনসাধারণের জন্য কীভাবে সর্বোত্তমভাবে সেবা প্রদান করে তা বিবেচনা করা । রাষ্ট্রীয় নীতিমালা হাজার হাজার বছর ধরে জনকল্যাণ ও বিজ্ঞানকে আর্থিকভাবে প্রভাবিত করেছে, কমপক্ষে মোহিস্টদের সময় থেকে যারা হান্ড্রেড স্কুল অফ থট দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, এবং চীনে Warring রাজ্যের সময় রক্ষণাত্মক দুর্গসমূহের অধ্যয়ন গবেষণায় অনুপ্রাণিত করেছিলেন । গ্রেট ব্রিটেনে সপ্তদশ শতাব্দীতে রয়্যাল সোসাইটির সরকারি অনুমোদনটি একটি বৈজ্ঞানিক সম্প্রদায়কে স্বীকৃতি দিয়েছিল যা আজকের দিনেও বিদ্যমান । বিজ্ঞানের পেশাদারিত্ব উনিশ শতকে শুরু হয়েছিল এবং বৈজ্ঞানিক সংস্থার সৃষ্টি দ্বারা আংশিকভাবে সক্রিয় করা হয়েছিল । যেমন-জাতীয় বিজ্ঞান একাডেমী, কাইজার উইলহেম ইন্সটিটিউট, এবং তাদের নিজ দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির রাষ্ট্রীয় তহবিলের মাধ্যমে পরিচালিত হত । পাবলিক পলিসি শিল্প গবেষণা জন্য পুঁজি সরঞ্জাম এবং বৌদ্ধিক অবকাঠামোর জন্য যে তহবিল দরকার তা গবেষণা ফান্ডের মাধ্যমে বা ঐ সংস্থাকে কর প্ররোচনা প্রদান করার মাধ্যমে প্রভাবিত করতে পারেন । ভানিভার বুশ ন্যাশনাল সায়েন্স ফাউন্ডেশনের অগ্রদূত এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সরকারের জন্য বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও উন্নয়ন কার্যালয়ের পরিচালক ১৯৪৫ সালের জুলাই লিখেছিলেন যে "বিজ্ঞান সরকারের একটি সঠিক উদ্বেগের বিষয়। রাজনৈতিক ব্যবহার অনেক বিষয় বিজ্ঞানের সম্পর্ককে ক্ষতিগ্রস্ত করে মিডিয়া এবং রাজনীতিবিদদের দ্বারা বিজ্ঞান ও বৈজ্ঞানিক আর্গুমেন্টগুলি ব্যবহার করার ফলে । খুব বিস্তৃত সাধারণীকরণের হিসাবে অনেক রাজনীতিক নিশ্চয়তা এবং সত্য খোঁজেন আর বিজ্ঞানীরা সাধারণত সম্ভাব্যতা এবং caveats অফার করেন । যাইহোক, রাজনীতিবিদদের দ্বারা গণমাধ্যম শোনার সামর্থ্য প্রায়ই জনসাধারণের দ্বারা বৈজ্ঞানিক বিষয়গুলি বোঝার ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে । উদাহরণ হিসাবে যুক্তরাজ্যের এমএমআর ইস্যুতে সৃষ্ট বিতর্ককে অন্তর্ভুক্ত করা যায় । ১৯৮৮ সালে সরকারি মন্ত্রী এডউইন কুরিয়েকে জোর পূর্বক পদত্যাগের জন্য বাদ্য করা হয়েছিল কারণ তিনি প্রকাশ করে দিয়েছিলেন যে ব্যাটারিজাত ডিমকে সালমোনেলা দিয়ে দূষিত করা হয়েছিল । জন হরগান, ক্রিস মুনে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার গবেষকগণ বৈজ্ঞানিক সার্টিফিকেট আর্গুমেন্টেশন পদ্ধতি (এসএএনএএম) বর্ণনা করেছেন, যেখানে কোনও প্রতিষ্ঠান বা চিন্তাধারা তাদের সমর্থিত বিজ্ঞাপনের উপর সন্দেহ করার জন্য তাদের একমাত্র লক্ষ্য করে কারণ এটি রাজনৈতিক এজেন্ডাগুলির সাথে বিরোধিতা করে । হ্যাঙ্গক ক্যাম্পবেল এবং মাইক্রোবায়োলজি বিশেষজ্ঞ অ্যালেক্স বিয়ারজো রাজনীতিতে ব্যবহৃত বিশেষত বামপন্থী "feel-good fallacies" বর্ণনা করেছেন যেখানে রাজনীতিবিদরা এমন একটি পজিশন তৈরি করেন যা মানুষকে কিছু নীতি সমর্থন করার ব্যাপারে স্বাবাভিক করে তুলে , এমনকি যখন বৈজ্ঞানিক প্রমাণ দেখায় যে উদ্বিগ্ন হওয়ার প্রয়োজন নেই বা বর্তমান কর্মসূচিতে নাটকীয় পরিবর্তনের কোন প্রয়োজন নেই। বৈজ্ঞানিক চর্চা যদিও প্লিনির প্রাকৃতিক ইতিহাস সম্পর্কিত এনসাইক্লোপিডিয়াগুলি (৭৭ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ) গভীর সত্যের প্রমাণ দেয়, তবে তারা অবিশ্বস্ত প্রমাণিত হয়েছিল । একটি সংশয়বাদী দৃষ্টিভঙ্গি, প্রমাণের একটি পদ্ধতির দাবি করে যা অবিশ্বস্ত জ্ঞান মোকাবেলা করার জন্য গৃহীত বাস্তব পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। যেমন ১০০০ বছর আগে আলহাজেন (টলেমীর বিষয়ে সন্দেহ করেছিলেন), রজার বেকন, উইটেলো, জন পেখাম, ফ্রান্সিস বেকন (১৬০৫) এবং সি .এস. পিয়ারস (১৮৩৯-১৯১৪) এর মত পণ্ডিতরা অনিশ্চয়তার এই বিষয়গুলি সম্প্রদায়কে মোকাবেলা করতে দিয়েছিলেন । বিশেষ করে, প্রতারণাপূর্ণ যুক্তি প্রকাশ হতে পারে, যেমন "পরিণাম দৃঢ় করা।" "যদি একজন মানুষ নিশ্চিতভাবেই শুরু করে তবে সে সন্দেহের মধ্যেই পতিত হবে, কিন্তু যদি সে সন্দেহের সাথে শুরু করতে চায় তবে সে নিশ্চিতভাবেই শেষ করবে।" - ফ্রান্সিস বেকন, "The Advancement of Learning", বই ১, ভি, ৮ একটি সমস্যা তদন্তের পদ্ধতি হাজার বছর ধরে পরিচিত এবং অনুশীলনের তত্ত্ব অতিক্রম চর্চার দিকে প্রসারিত হয়েছে । উদাহরণস্বরূপ, পরিমাপের ব্যবহার, সম্প্রদায়ের মধ্যে বিদ্যমান বিরোধের নিষ্পত্তি করার একটি বাস্তবসম্মত পদ্ধতি। জন জিমান নির্দেশ করে যে আন্তঃবৈচিত্র্যিক প্যাটার্ন শনাক্তকরণটি সকল বৈজ্ঞানিক জ্ঞান সৃষ্টির জন্য মৌলিক বিষয়। জিমান দেখায় যে বিজ্ঞানীরা শত শত শতাব্দী ধরে একে অপরের পরিমাপ কীভাবে চিহ্নিত করতে পারে; তিনি এই ক্ষমতাটিকে "চেতনাগত যৌক্তিকতা" বলে উল্লেখ করেন। তারপর তিনি ঐকমত তৈরি করেন, ঐক্যমত্যের দিকে অগ্রসর হন এবং অবশেষে নির্ভরযোগ্য জ্ঞানের আশ্রয় নেন । পদটিকা তথ্যসূত্র উপাত্তসূত্র আরও পড়ুন Augros, Robert M., Stanciu, George N., The New Story of Science: mind and the universe, Lake Bluff, Ill.: Regnery Gateway, c1984. Burguete, Maria, and Lam, Lui, eds.(2014). All About Science: Philosophy, History, Sociology & Communication. World Scientific: Singapore. Cole, K. C., Things your teacher never told you about science: Nine shocking revelations Newsday, Long Island, New York, March 23, 1986, pp. 21+ Feyerabend, Paul (2005). Science, history of the philosophy, as cited in Feynman, Richard "Cargo Cult Science" Gopnik, Alison, "Finding Our Inner Scientist" , Daedalus, Winter 2004. Krige, John, and Dominique Pestre, eds., Science in the Twentieth Century, Routledge 2003, Levin, Yuval (2008). Imagining the Future: Science and American Democracy. New York, Encounter Books. Kuhn, Thomas, The Structure of Scientific Revolutions, 1962. Papineau, David. (2005). Science, problems of the philosophy of., as cited in Books I-III (2001 — 91(4)) Vol 1 Commentary and Latin text via JSTOR;  — 91(5) Vol 2 English translation, Book I:TOC pp. 339–41, Book II:TOC pp. 415–16, Book III:TOC pp. 559–60, Notes 681ff, Bibl. via JSTOR বহিঃসংযোগ প্রকাশনাসমূহ "GCSE Science textbook". Wikibooks.org সহায়ক উৎস Euroscience: Science Development in the Latin American docta Classification of the Sciences in Dictionary of the History of Ideas. (Dictionary's new electronic format is badly botched, entries after "Design" are inaccessible. Internet Archive old version). "Nature of Science" University of California Museum of Paleontology United States Science Initiative Selected science information provided by US Government agencies, including research & development results How science works University of California Museum of Paleontology বিজ্ঞান বিজ্ঞান জ্ঞান মূল বিষয়ের নিবন্ধ পর্যবেক্ষণ
https://en.wikipedia.org/wiki/Science
Science
Science is a strict systematic discipline that builds and organises knowledge in the form of testable hypotheses and predictions about the world. Modern science is typically divided into three major branches: the natural sciences (e.g., physics, chemistry, and biology), which study the physical world; the social sciences (e.g., economics, psychology, and sociology), which study individuals and societies; and the formal sciences (e.g., logic, mathematics, and theoretical computer science), which study formal systems, governed by axioms and rules. There is disagreement whether the formal sciences are scientific disciplines, as they do not rely on empirical evidence. Applied sciences are disciplines that use scientific knowledge for practical purposes, such as in engineering and medicine. The history of science spans the majority of the historical record, with the earliest written records of identifiable predecessors to modern science dating to Bronze Age Egypt and Mesopotamia from around 3000 to 1200 BCE. Their contributions to mathematics, astronomy, and medicine entered and shaped the Greek natural philosophy of classical antiquity, whereby formal attempts were made to provide explanations of events in the physical world based on natural causes, while further advancements, including the introduction of the Hindu–Arabic numeral system, were made during the Golden Age of India.: 12  Scientific research deteriorated in these regions after the fall of the Western Roman Empire during the Early Middle Ages (400 to 1000 CE), but in the Medieval renaissances (Carolingian Renaissance, Ottonian Renaissance and the Renaissance of the 12th century) scholarship flourished again. Some Greek manuscripts lost in Western Europe were preserved and expanded upon in the Middle East during the Islamic Golden Age, along with the later efforts of Byzantine Greek scholars who brought Greek manuscripts from the dying Byzantine Empire to Western Europe at the start of the Renaissance. The recovery and assimilation of Greek works and Islamic inquiries into Western Europe from the 10th to 13th century revived "natural philosophy", which was later transformed by the Scientific Revolution that began in the 16th century as new ideas and discoveries departed from previous Greek conceptions and traditions. The scientific method soon played a greater role in knowledge creation and it was not until the 19th century that many of the institutional and professional features of science began to take shape, along with the changing of "natural philosophy" to "natural science". New knowledge in science is advanced by research from scientists who are motivated by curiosity about the world and a desire to solve problems. Contemporary scientific research is highly collaborative and is usually done by teams in academic and research institutions, government agencies, and companies. The practical impact of their work has led to the emergence of science policies that seek to influence the scientific enterprise by prioritising the ethical and moral development of commercial products, armaments, health care, public infrastructure, and environmental protection.
1220
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A6%95%20%E0%A6%AB%E0%A7%8D%E0%A6%B2%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87%E0%A6%A1
পিংক ফ্লয়েড
পিংক ফ্লয়েড ১৯৬৫ সালে গঠিত লন্ডন ভিত্তিক ব্রিটিশ রক ব্যান্ড। ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড ব্যান্ড হিসেবে তাদের দার্শনিক গানের কথা, সম্প্রসারিত সুরারোপ (কম্পোজিশন), ধ্বনিত নিরীক্ষণ এবং বিস্তৃত সরাসরি পরিবেশনার জন্য দলটি ব্রিটিশ সাইকেডেলিক ব্যান্ড হিসেবে শীর্ষস্থানীয় হয়ে উঠে। তারা প্রোগ্রেসিভ রক ঘরানার নেতৃস্থানীয় ব্যান্ড, যাদের কেউ কেউ সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ প্রোগ্রেসিভ রক ব্যান্ড হিসেবে উল্লেখ করে। ১৯৬৫ সালে স্থাপত্যবিদ্যার শিক্ষার্থী সিড ব্যারেট (গিটার ও মূল কন্ঠ), নিক মেইসন (ড্রাম), রজার ওয়াটার্স (বেস ও কন্ঠ) এবং রিচার্ড রাইট (কিবোর্ড ও কন্ঠ)- এই চারজন তরুণের সমন্বয়ে পিংক ফ্লয়েড গঠিত হয়। ব্যারেটের নেতৃত্বাধীনে দলটি দুটি চার্ট তালিকাভুক্ত একক এবং দ্য পাইপার অ্যাট দ্য গেট্‌স অব ডউন (১৯৬৭) নামে একটি সফল আত্মপ্রকাশ অ্যালবাম প্রকাশ করে। ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বরে, পঞ্চম সদস্য হিসেবে গিটারবাদক ডেভিড গিলমোর দলে যোগদান করেন। ১৯৬৮ সালের এপ্রিলে, মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটায় ব্যারেট দল ত্যাগ করেন। ওয়াটার্স, ব্যান্ডের প্রধান গীতিকার এবং ধারণাগত নেতা হয়ে ওঠেন, পাশাপাশি তাদের সমালোচক নন্দিত এবং বাণিজ্যিকভাবে সফল দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন (১৯৭৩), উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার (১৯৭৫), অ্যানিম্যাল্‌স (১৯৭৭), দ্য ওয়াল (১৯৭৯) এবং দ্য ফাইনাল কাট (১৯৮৩) অ্যালবামের ধারণা উদ্ভাবন করেন। ১৯৮২ সালের পিংক ফ্লয়েড – দ্য ওয়াল অ্যালবামের উপর ভিত্তি করে নির্মিত সঙ্গীতধর্মী চলচ্চিত্রটি দুটি বাফটা পুরস্কার জিতেছে। এছাড়াও ব্যান্ডটি সাতটি চলচ্চিত্রের স্কোর পরিচালনা করেছে। ব্যক্তিগত দুশ্চিন্তায় থাকার দরুন, ১৯৭৯ সালে রাইট পিংক ফ্লয়েড ত্যাগ করেন; ১৯৮৫ সালে একই পথ অনুসরণ করেন ওয়াটার্স। গিলমোর এবং মেইসন পিংক ফ্লয়েড হিসাবে নিজেদের অব্যাহত রাখেন। পরবর্তীতে সক্ষিপ্ত সময়ের জন্য রাইট পুনরায় ব্যান্ডে যোগ দিয়েছিলেন। এরপর তারা তিনজন তৈরি করেন আরও দুটি অ্যালবাম— অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন (১৯৮৭) ও দ্য ডিভিশন বেল (১৯৯৪)— এবং পরবর্তীতে দীর্ঘকাল নিস্ক্রিয় থাকার আগ পর্যন্ত দলটির সঙ্গীত সফর অব্যাহত রাখেন। প্রায় দুই দশক সময় পরে, ২০০৫ সালে লাইভ এইট নামে বৈশ্বিক সচেতনতা অনুষ্ঠানে পিংক ফ্লয়েড হিসেবে পরিবেশন করতে ব্যারেট ব্যতীত দলের বাকি সদস্যরা সর্বশেষবার একত্রিত হয়েছিলেন। ব্যারেট মারা যান ২০০৬ সালে, এবং রাইট ২০০৮ সালে। পিংক ফ্লয়েডের সর্বশেষ স্টুডিও অ্যালবাম দি এন্ডলেস রিভার (২০১৪), ওয়াটার্সকে ছাড়াই রেকর্ড করা হয়, এবং যা মূলত তাদের অপ্রকাশিত সঙ্গীত উপাদানের ওপর ভিত্তি করে নির্মিত। ২০২২ সালে, গিলমোর এবং মেইসন পিংক ফ্লয়েডকে সংস্কার করে রুশ-ইউক্রেনীয় যুদ্ধের প্রতিবাদে "হেই, হেই, রাইজ আপ!" গানটি প্রকাশ করেন। ২০১৩ সাল নাগাদ, বিশ্বব্যাপী ২৫০ মিলিয়নেরও বেশি পিংক ফ্লয়েডের রেকর্ড বিক্রি হয়েছিল, যা তাদের সর্বকালের শ্রেষ্ঠ-বিক্রি হওয়া সঙ্গীতশিল্পীদের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করে। দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন এবং দ্য ওয়াল গ্র্যামি হল অব ফেমের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল, এবং এই অ্যালবামগুলিসহ তাদের উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার সর্বকালের সেরা বিক্রিত অ্যালবামগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হ্য়। তাদের চারটি অ্যালবাম ইউএস বিলবোর্ড ২০০-এর শীর্ষে এবং পাঁচটি অ্যালবাম ইউকে অ্যালবাম চার্টের শীর্ষে রয়েছে। পিংক ফ্লয়েডের হিট একক গানগুলির মধ্যে রয়েছে "সি এমিলি প্লে" (১৯৬৭), "মানি" (১৯৭৩), "অ্যানাদার ব্রিক ইন দ্য ওয়াল (অংশ ২)" (১৯৭৯), "নট নাও জন" (১৯৮৩), "অন দ্য টার্নিং অ্যাওয়ে" (১৯৮৭) এবং "হাই হোপ্‌স" (১৯৯৪)। ১৯৯৬ সালে ব্যান্ডটি মার্কিন রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেমের এবং ২০০৫ সালে ইউকে মিউজিক হল অব ফেমের অর্ন্তভুক্ত হয়। পিংক ফ্লয়েডকে ব্রিটিশ সাইকিডেলিয়ার শীর্ষ দলগুলির একটি বিবেচনা করা হয় এবং প্রোগ্রেসিভ রক ও চারিপার্শ্বিক সঙ্গীতের মতো ধারাগুলির বিকাশে অনুপ্রেরণা সৃষ্টির কৃতিত্ব দেওয়া হয়। ২০০৮ সালে, সুইডেনের রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ আধুনিক সঙ্গীতে অবদানের জন্য পিংক ফ্লয়েডকে পোলার মিউজিক প্রাইজ প্রদান করেন। ইতিহাস ১৯৬৩–৬৫: গঠন ব্যান্ড গড়ার আগে রজার ওয়াটার্স এবং নিক মেইসনের সাক্ষাত ঘটে, যখন তারা দুজনই রিজেন্ট স্ট্রিটে লন্ডন পলিটেকনিকে স্থাপত্যবিদ্যায় অধ্যয়ন করছেন। তারা প্রথম কিথ নোবল ও ক্লাইভ মেটক্যাফ পরিচালিত একটি দলে নোবলের বোন শেইলাঘের সঙ্গে একসঙ্গে সঙ্গীত পরিবেশন করেন। পরবর্তী বছর স্থাপত্যবিদ্যার আরেক সতীর্থ ছাত্র, রিচার্ড রাইট তাদের সঙ্গে যুক্ত হন, এবং দলটি হয়ে ওঠে 'সিগমা সিক্স' নামক একটি সেক্সটেট। ওয়াটার্স লিডগিটার বাজান, মেইসন ড্রাম, এবং রাইট রিদম গিটার (যেহেতু তখন পর্যন্ত কিবোর্ডের উপলভ্য সীমিত ছিল)। সে সময়ে ব্যান্ডটি ব্যক্তিগত অনুষ্ঠানে পরিবেশন করতো এবং রিজেন্ট স্ট্রিটে পলিটেকনিকের ভূগর্ভস্থ অংশে বা বেসমেন্টে একটি চাঘরে মহড়া দিতো। সে সময়ে তারা সার্চার্স ব্যান্ড কর্তৃক এবং তাদের ব্যাবস্থাপক ও গীতিকার সহকর্মী কেইন চ্যাপম্যান রচিত উপাদানের মাধ্যমে সঙ্গীত পরিবেশন করতো। ১৯৬৩ সালের সেপ্টেম্বরে, ওয়াটার্স ও মেইসন লন্ডনে ক্রাউচ এন্ডের নিকট ৩৯ স্ট্যানহোপ গার্ডেনের একটি ফ্ল্যাটে স্থানান্তরিত হন, যেটি ছিল নিকটবর্তী হর্নসি কলেজ অব আর্ট ও রিজেন্ট স্ট্রিট পলিটেকনিকের খণ্ডকালীন শিক্ষক মাইক লিওনার্ডের মালিকানাধীন। ১৯৬৪ সালের শিক্ষাবর্ষ সমাপ্তির পর মেইসন স্থানান্তরিত হন, এবং ১৯৬৪-এর সেপ্টেম্বরের মাঝামাঝি যুক্ত হন গিটারবাদক বব ক্লোসা, যিনি ওয়াটার্সকে বেস গিটার বাজাতে প্ররোচনা দিয়েছিলেন। সিগমা সিক্স বিভিন্ন নামের মধ্য দিয়ে, যার মধ্যে মেগাডেথ্‌স, আব্দাবাস অ্যান্ড দ্য স্কাইমিং আব্দাবাস, লিওনার্ড'স লজার্স, স্পেকট্রাম ফাইভ অন্তর্ভুক্ত, শেষে টি সেট নামে প্রতিষ্ঠাপিত হয়। ১৯৬৪ সালে, মেটকাল্ফ ও নোবল তাদের নিজস্ব ব্যান্ডে চলে যায়, গিটারবাদক সিড ব্যারেট স্ট্যানহোপ গার্ডেনে ক্লোসা ও ওয়াটার্সের সঙ্গে যুক্ত হন। দুই বছরের কনিষ্ঠ, ব্যারেট, ১৯৬২ সালে ক্যাম্বারওয়েল কলেজ অব আর্টসে অধ্যয়নের জন্য লন্ডনে আসেন। ওয়াটার্স ও ব্যারেট ছিল শৈশব বন্ধু। ওয়াটার্স প্রায়ই ব্যারেটর মায়ের বাড়িতে যেতেন এবং সেখানে তাকে গিটার বাজাতে দেখা যেত। ব্যারেট সম্পর্কে মেইসন বলেন: "একটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে, যখন সকলে ঠান্ডায় আত্মসচেতন উপায়ে শিশুর মতোন হয়ে উঠত, তখন ব্যারেট অবাঞ্ছিতভাবে বাইরে বেরতো; আমাদের প্রথম সাক্ষাতের স্থায়ী স্মৃতি রয়েছে, যখন সে নিজেকে আমার সঙ্গে পরিচিত করে নিতে কিছুটা বিরক্তও হচ্ছিল।" ১৯৬৩ সালের শেষের দিকে নোবল ও মেটকাল্ফ টি সেট ত্যাগ করেন, এবং ক্লোসা, গায়ক ক্রিস ডেনিসের সঙ্গে ব্যান্ডটির পরিচয় করিয়ে দেন। ডেনিস ছিলেন রয়্যাল এয়ার ফোর্সের (আরএএফ) প্রযুক্তিবিদ। ১৯৬৪ সালের ডিসেম্বরে, ওয়েস্ট হ্যাম্পস্টেডের একটি স্টুডিওতে তারা দলটির প্রথম রেকর্ডিংয়ের সময় নির্ধারণ করে। সেখানে রাইটের এক বন্ধু তাদেরকে বিনামূল্যে কিছু বাড়তি সময় প্রাপ্তির সুযোগ করে দিয়েছিল। রাইট সে সময়ে পড়াশোনা থেকে বিরতি নিয়েছিলেন, এবং সেই অধিবেশনে তিনি অংশগ্রহণ করেন নি। ১৯৬৫ সালের প্রথম দিকে আরএএফ যখন ডেনিসকে বাহরাইনে একটি পদে নিয়োগ দেয়, তখন ব্যারেট ব্যান্ডের মুখপাত্র ছিলেন। পরবর্তী বছর, তারা লন্ডনে কেনসিংটন হাই স্ট্রিটের নিকট কাউন্টডাউন ক্লাবের একটি আবাসিক ব্যান্ড হয়ে ওঠে, যেখানে শেষ রাত থেকে শুরু করে ভোর পর্যন্ত তারা ৯০ মিনিটের তিনটি সেট পরিবেশন করতো। এই সময়ের মধ্যে, দলের প্রয়োজনীয়তা স্বত্তে গানের পুনরাবৃত্তি হ্রাস করার লক্ষে তারা তাদের নির্ধারিত সেটসমূহ দীর্ঘ করতে অনুপ্রাণিত হতো। সে সময় ব্যান্ডটি বুঝতে পারে যে, "সুরের মধ্য দিয়েই গান দীর্ঘ হতে পারে", মেইসন বলেন। বাবা-মায়ে চাপ ও কলেজ শিক্ষকের পরামর্শের পর, ক্লোসা ১৯৬৫ সালের মাঝামাঝি সময়ে ব্যান্ড ত্যাগ করেন এবং ব্যারেট লিড গিটারের নেতৃত্ব গ্রহণ করেন। ১৯৬৫–১৯৬৭: প্রারম্ভিক বছর পিংক ফ্লয়েড ১৯৬৫ সালের শেষের দিকে ব্যান্ডটি প্রথম নিজেদের 'পিংক ফ্লয়েড সাউন্ড' হিসেবে পরিচিত করে। যদিও ব্যারেট সে সময়ে টি সেট নামের অন্য আরেকটি ব্যান্ডের উপস্থিতি আবিষ্কার করেন, এবং দ্রুততার সঙ্গে ব্যান্ডের নতুন নাম তৈরি করেন। দলের নতুন নামটি পিংক অ্যান্ডারসন ও ফ্লয়েড কাউন্সিল নামে দুজন ব্লুজ সঙ্গীতশিল্পীর নামের প্রথম অংশের সংযোজনের মাধ্যমে তৈরি, যাদের প্যাডমন্ট ব্লুজ রেকর্ড ব্যারেটের সংগ্রহে ছিল। ১৯৬৬ সালের দিকে, দলটি প্রধানত রিদম অ্যান্ড ব্লুজ গান মঞ্চস্থ করবে ঠিক করেছিল এবং এজন্য অগ্রিম বুকিংও পেতে শুরু করে তারা। যার মধ্যে ১৯৬৬-এর মার্চে মার্কি ক্লাবে একটি পরিবেশনা উল্লেখযোগ্য; যেখানে তারা লন্ডন স্কুল অব ইকোনমিক্সের প্রভাষক পিটার জেনারের নজরে আসে। জেনার, ব্যারেট ও রাইটের নির্মিত ধ্বনিত প্রভাবে অভিভূত হন, এবং তার ব্যবসায়িক অংশীদার ও বন্ধু অ্যান্ড্রু কিংয়ের সঙ্গে ব্যান্ডটির ব্যবস্থাপক হয়ে ওঠেন। এই জুটির সঙ্গীত শিল্পে সামান্য অভিজ্ঞতা থাকলেও ব্ল্যাকহিল এন্টারপ্রাইজেস প্রতিষ্ঠার জন্য তারা কিংয়ের উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ ব্যয় করেন এবং ব্যান্ডের জন্য প্রায় £১,০০০ () মূল্যের নতুন যন্ত্র-সরঞ্জাম ক্রয় করেন। এই সময়ে জেনার, ব্যান্ডের নাম থেকে "সাউন্ড" অংশটি বাদ দেয়ার পরামর্শ দেন, এইভাবে তারা পিংক ফ্লয়েড হয়ে ওঠে। জেনার ও কিংয়ের নির্দেশনার অধীনে, ব্যান্ডটি লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড সঙ্গীত দৃশ্যের অংশ হয়ে ওঠে, পাশাপাশি আর অল সেইন্টস হল এবং মার্ককিউ সহ বিভিন্ন ভেন্যুতে পরিবেশন করতে থাকে। কাউন্টডন ক্লাবে পরিবেশনের সময়, ব্যান্ডটি দীর্ঘ যন্ত্রসঙ্গীত বাজানোর পরীক্ষা-নিরীক্ষা চালায়, এবং প্রাথমিক তবে কার্যকরীভাবে রঙিন স্লাইড ও গার্হস্থ্য আলোর ব্যবহারের মাধ্যমে অভিক্ষিপ্ত আলোক প্রদর্শনীর চর্চাও শুরু করে। জেনার ও কিংয়ের সামাজিক সংযোগগুলি ফাইন্যান্সিয়াল টাইমসে ব্যান্ডটির অভিক্ষিপ্ত কাভারেজ লাভ করতে সহায়তা করেছিল, এবং সানডে টাইমসের একটি নিবন্ধ যেখানে বলা হয়েছে: "নতুন আইটি ম্যাগাজিনটি চালু করার সময়, আরেকটি পপ দল বলে যে পিংক ফ্লয়েড পরিবশেনকালে তাদের পেছনে বিশাল পর্দায় বিচিত্র রঙের অবয়বগুলি ছড়িয়ে পাড়ার সময় কম্পান্বিত সঙ্গীত বাজিয়েছিল ... যা দৃশ্যত খুবই সাইকেডেলিক"। ১৯৬৬ সালে, ব্যান্ডটি ব্ল্যাকহিল এন্টারপ্রাইজেসের সঙ্গে তাদের ব্যবসায়িক সম্পর্ক শক্তিশালী করে তোলে। জেনার ও কিংয়ের সঙ্গে ব্যান্ড সদস্যদের প্রত্যেকে ছয় ভাগের এক ভাগ শেয়ারের সমান অংশীদার হয়ে ওঠে। ১৯৬৬ সালের শেষের দিকে, তাদের সেটে আরঅ্যান্ডবি মান হ্রাস পাওয়ায় মূল ব্যারেটের অন্তর্ভুক্তি বাড়তে থাকে, যার বেশিরভাগই পরবর্তীতে তাদের প্রথম অ্যালবামে অন্তর্ভুক্ত হয়। যদিও উল্লেখযোগ্যভাবে তাদের পরিবেশনায় পৌনঃপুনিকতা বাড়তে থাকা স্বত্ত্বেও ব্যান্ডটি তখনো ব্যাপকভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে নি। একটি ক্যাথলিক যুব ক্লাবে পরিবেশনার পর, এর মালিক তাদের অর্থ প্রদান করতে অসম্মতি জানিয়ে দাবি করেন যে তাদের পরিবেশনা কোনো সঙ্গীত-ই ছিল না। ব্যন্ডটির ব্যবস্থাপক যুব প্রতিষ্ঠানের মালিকের বিরুদ্ধে একটি মামলা দায়ের করার পরও ব্যর্থ হয়, এবং স্থানীয় ম্যাজিস্ট্রেট মালিকের সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানায়। অন্যদিকে ব্যান্ডটি লন্ডনে ইউএফও ক্লাবে চমৎকারভাবে গ্রহণযোগ্য হয়ে ওঠে, যেখানে তারা ভক্তদের একটি ভিত নির্মাণ করতে শুরু করে। ব্যারেটের পরিবেশনা উৎসাহী ছিল, "চারপাশে লাফানো ... পাগলামি ... তাৎক্ষণিক উদ্ভাবন ... [অনুপ্রাণিত] তার বিগত সীমাবদ্ধতা ছাড়িয়ে যায় এবং যে স্থানের মধ্যে ছিল ... তা খুবই আগ্রহব্যাঞ্জক। যা অন্যদের মধ্যে কেউ করতে পারে না", লিখেছেন জীবনী লেখক নিকোলাস শ্যাফনার। ইএমআই-এর সঙ্গে চুক্তি ১৯৬৭ সালের দিকে, পিংক ফ্লয়েড সঙ্গীত শিল্পের মনোযোগ আকর্ষণ করতে শুরু করে। রেকর্ড কোম্পানিগুলির সঙ্গে আলোচনার সময়, আইটি সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও ইউএফও ক্লাবের ব্যবস্থাপক জো বয়েড এবং পিংক ফ্লয়েডের বুকিং এজেন্ট ব্রায়ান মরিসন লন্ডনের ওয়েস্ট হ্যাম্পস্টেডের সাউন্ড টেকনিক্স স্টুডিওতে একটি রেকর্ডিং অধিবেশনের আয়োজন করে। এর তিন দিন পরে, পিংক ফ্লয়েড ইএমআই রেককর্ডসের সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করে, এবং অগ্রিম £৫,০০০ ডলার গ্রহণ করে (২০১৮-এর হিসেবে £৮৯,১০০ এর সমতুল্য )। ১৯৬৭ সালের ১০ মার্চ, ইএমআই তাদের কলাম্বিয়া লেবেলের অধীনে ব্যান্ডটির প্রথম একক গান "আরনল্ড লেইন", সঙ্গে বি-পাশে "ক্যান্ডি অ্যান্ড অ্যা কারেন্ট বান" গানের সঙ্গে মুক্তি দেয়। দুটি ট্র্যাকই রেকর্ড করা হয়েছিল ১৯৬৭ সালের ২৯ জানুয়ারি। "আরনল্ড লেইন" গানের বেশান্তর সূত্রসমূহ সে সময়ে বিভিন্ন রেডিও স্টেশন কর্তৃক নিষিদ্ধ হয়েছিল; যদিও, সঙ্গীত ব্যবসার বিক্রয় পরিসংখ্যান সরবরাহকারী খুচরা বিক্রেতাদের সৃজনশীল কারচুপি থেকে প্রাপ্ত উপাত্ত অনুসারে জানা যায় যে এই একক গানটি ইউকে চার্টে ২০ নম্বর স্থানে অবস্থান নিয়েছিল। ইএমআই-কলাম্বিয়া পিংক ফ্লয়েডের দ্বিতীয় একক "সি এমিলি প্লে", প্রকাশ করে ১৯৬৭ সালের ১৬ জুন। এটি "আরনল্ড লেইন" এককের তুলনায় কিছুটা অধিক গ্রহণযোগ্যভাবে ইউকে চার্টে ৬তম স্থান অবস্থান নিয়েছিল। ব্যান্ডটি বিবিসি'র লুক অব দ্য উইক অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়েছিল, যেখানে ওয়াটার্স ও ব্যারেট, পাণ্ডিত্যপূর্ণ এবং চিত্তাকর্ষকভাবে, হান্স কেলারের কঠিন প্রশ্নের সম্মুখীন হয়েছিলেন। ব্যান্ডটি এছাড়াও উপস্থিত হয়েছিল বিবিসি'র জনপ্রিয় টেলিভিশন অনুষ্ঠান টপ অব দ্য পপ্‌স-এ, যেখানে বিতর্কিতভাবে শিল্পীদের নিজেদের গান গেয়ে এবং বাজিয়ে পরিবেশন করার প্রয়োজন হয়ে থাকে। যদিও পিংক ফ্লয়েড-কে আরও দুটি পরিবেশনার জন্য ফিরে আসতে হয়, আর তৃতীয় পরিবেশনার মধ্য দিয়ে, ব্যারেটের নেতৃত্বের উদ্ভব ঘটতে শুরু করে, এবং প্রায় একই সময়ে প্রথম ব্যান্ডটির সঙ্গীতাচরণেও উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন নজরে আসে। ১৯৬৭ সালের প্রথম দিকে, ব্যারেট নিয়মিত এলএসডি গ্রহণ করতেন, এবং এ-সম্পর্কে মেইসন বর্ণনা করেছিলেন, "সাম্প্রতিক সবকিছু থেকেই সে (ব্যারেট) তখন সম্পূর্ণরূপে দূরে অবস্থান করতো"। দ্য পাইপার অ্যাট দ্য গেট্‌স অব ডউন মরিসন ও ইএমআই-এর প্রযোজক নরম্যান স্মিথ পিংক ফ্লয়েডের প্রথম রেকর্ডিং চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন, এবং চুক্তির অংশ হিসাবে, ব্যান্ডটি লন্ডনে ইএমআই স্টুডিওতে তাদের প্রথম অ্যালবাম রেকর্ড করতে সম্মত হয়। মেইসন এই সেশনটিকে ঝামেলাহীন ছিল বলে স্মরণ করেন। স্মিথ মতবিরোধ জানিয়ে উল্লেখ করেন, ব্যারেট সে সময়ে তার পরামর্শ এবং গঠনমূলক সমালোচনায় অপ্রতিক্রিয়াশীল ছিলেন। ১৯৬৭ সালের আগস্টে ইএমআই-কলাম্বিয়া দ্য পাইপার অ্যাট দ্য গেট্‌স অব ডউন মুক্তি দেয়। অ্যালবামটি ইউকে চার্টে ১৪ সপ্তাহ অতিক্রম করে ৬ নম্বরে অবস্থান নিয়েছিল। এক মাস পর, অ্যালবামটি টাওয়ার রেকর্ডস লেবেলের অধীনে পুনরায় মুক্তি পায়। একই সাথে পিংক ফ্লয়েড ইউএফও ক্লাবে বৃহত্তর জনসাধারণকে আকর্ষণ করে চলেছে; যদিও, ব্যারেটের মানসিক ভাঙ্গন সে সময়ে গুরুতর উদ্বেগের সৃষ্টি করে। দলটি প্রাথমিকভাবে ভেবেছিল যে ব্যারেটের এই অনিয়মিত আচরণ ক্ষণস্থায়ী হবে, তবে কেউ কেউ এ-ব্যাপারে ক্ষীণ আশাবাদী ছিলেন, যাদের মধ্যে জেনার ও তার সহকারী অন্তর্ভুক্ত, জুন চাইল্ড, মন্তব্য করেন যে: "আমি তাকে [ব্যারেটকে] সাজঘরে খুঁজে পেয়েছি এবং সে তখন প্রায় নেই... এমন অবস্থা। ওয়াটার্স ও আমি তাকে টেনে তুলি, [এবং] মঞ্চের বাইরে নিয়ে যাই;... ব্যান্ডের বাকিরা পুনরায় বাজাতে শুরু করে এবং সিড তখন শুধু সেখানে দাঁড়িয়েই ছিল। তার গলায় গিটার ছিল এবং তার বাহু ছাড়া অবস্থায় ছিল।" ক্রমান্বয়ে জাতীয় জ্যাজ ও ব্লুজ উৎসবে পিংক ফ্লয়েডের উপস্থিতি বাতিল করতে বাধ্য করে, পাশাপাশি অন্যান্য আনুষ্ঠানগুলিও। কিং, সঙ্গীত গগণমাধ্যগুলোয় অবগত করেন যে, ব্যারেট স্নায়বিক অবসাদে ভুগছিলেন। ওয়াটার্স মনোবিজ্ঞানী আর. ডি. লাইংয়ের সঙ্গে সিডের সাক্ষাতের আয়োজন করেন, এবং ব্যক্তিগত উদ্যোগে ব্যারেটের সাক্ষাত স্থির করেন, যদিও ব্যারেট তখন গাড়ি থেকেই বের হতে অসম্মতি জানান। ফোরমেন্টেরায় থাকাকালীন, স্যাম হাটের সঙ্গে, একজন চিকিৎসক যিনি আন্ডারগ্রাউন্ড সঙ্গীত ধারণায় প্রতিষ্ঠিত, ব্যারেটের দৃশ্যত কোনো উন্নতি ঘটে নি। সেপ্টেম্বরে প্রথম যুক্তরাষ্ট্র সফরের পর ব্যান্ডটি ইউরোপে অক্টোবর মাসের দিকে কয়েকটি কনসার্ট নির্দিষ্ঠ করে। ইউএস সফরের সময়, ব্যারেটের অবস্থা ক্রমান্বয়ে খারাপ হয়ে ওঠে। নভেম্বর মাসে ডিক ক্লার্ক এবং প্যাট বুন অনুষ্ঠানগুলিতে উপস্থাপনের সময়, ব্যারেট তার আয়োজকদের দৃষ্টি আকর্ষণে সাড়া না দিয়ে তাদের কিংকর্তব্যবিমূঢ় করে তোলে। বুনয়ের অনুষ্ঠানে "সি এমিলি প্লে" পরিবেশনের সময় ব্যারেট ঠোঁট মিলাতে অসম্মতি জানান। এই হতবুদ্ধিকর পর্বের পর, কিং তাদের যুক্তরাষ্ট্র সফরে ইতি টানেন এবং অবিলম্বে তাদের লন্ডনে বাড়িতে পাঠিয়ে দেন। ফেরার পর শীঘ্রই তারা, ইংল্যান্ড সফরের সময় জিমি হেন্ডরিক্সের সহযোগী ছিল; যদিও, ব্যারেটের বিষণ্ণতা নেতিবাচকভাবে তাদের সফর অব্যাহত রাখতে বিঘ্ন ঘটালে, ডিসেম্বর মাসে দলটি একরকম সঙ্কট মুহূর্তে পৌঁছোয়, যখন ব্যান্ডটি তাদের লাইন-আপে নতুন একজন সদস্য যোগদান করানোর উদ্যোগ নেয়। ১৯৬৭–১৯৭৮: অবস্থান্তর ও আন্তর্জাতিক সাফল্য ১৯৬৭: গিলমোর দ্বারা ব্যারেটের প্রতিস্থাপন ১৯৬৭ সালের ডিসেম্বরে, দলটি গিটারবাদক ডেভিড গিলমোরকে পিংক ফ্লয়েডের পঞ্চম সদস্য হিসেবে নিযুক্ত করে। গিলমোর ইতোমধ্যেই ব্যারেটকে জানতেন, ১৯৬০-এর দশকের প্রথম দিকে ক্যামব্রিজ টেকে (টেকনোলজি) তারা একসঙ্গে পড়াশোনা করেছিলেন। শিক্ষানবিশকালীন তারা দুইজন একসঙ্গে মধ্যাহ্নভোজের সময়ে গিটার ও হারমোনিকার মাধ্যমে পরিবশেন করতেন এবং পরবর্তীতে হিচ-হাইকে আর ফ্রান্সের দক্ষিণ জুড়ে তারা পথ পরিবেশনাও (বাস্কিং) করেছিলেন। ১৯৬৫ সালে, জোকার্স ওয়াইল্ড ব্যান্ডের সদস্য থাকাকালীন গিলমোর প্রথম টি সেট প্রত্যক্ষ করেছিলেন। মরিসনের সহকারী, স্টিভ ও'রোর্ক, সপ্তাহে £৩০ পাউন্ডের (২০১৮-এর হিসেবে £৫,০০ এর সমতুল্য) বিনিময়ে নিজের বাড়ির উপরে একটি কক্ষে গিলমোরকে নিযুক্ত করেন, এবং ১৯৬৮ সালের জানুযারিতে, ব্ল্যাকহিল এন্টারপ্রাইজেস গিলমোরকে ব্যান্ডের নতুন; দ্বিতীয় গিটারবাদক এবং পঞ্চম সদস্য হিসেবে ঘোষণা করে। আর ব্যান্ডটি একজন অ-কর্মক্ষম গীতিকার হিসেবে ব্যারেটের সঙ্গে দল চালিয়ে যাবার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়। জেনার মন্তব্য করেছেন: "ধারণা ছিল যে ড্যাভ (ডেভিড) ... [ব্যারেটের] খামখেয়ালীর ক্ষতি পুরণ করবে এবং যখন এটি কার্যকর হবে না শুধু তখনই সিডের সাহায্য নেয়া হবে। এটা শুধু সিডকে নামমাত্র দলে জড়িত রাখার চেষ্টা।" ব্যারেট হতাশা প্রকাশ করেন, যিনি "আরনল্ড লেইন" এবং "সি এমিলি প্লে" গানের পর আরও হিট গান লেখার প্রত্যাশা করেছিলেন, তার পরিবর্তে তিনি "হ্যাব ইউ গট ইট ইয়েট?" গানটি ইচ্ছাকৃতভাবে প্রতিটি কর্মক্ষমতার উপর এমন কাঠামো পরিবর্তন করেছিলেন যাতে গানটি শেখা এবং অনুকরণ করা দূরহ হয়ে ওঠে। ১৯৬৮ সালের জানুয়ারিতে পিংক ফ্লয়েডের পাঁচজন সদস্যের আলোকচিত্রে, ব্যারেটকে বাকিদের থেকে বিচ্ছিন্ন দেখা যায়। ব্যারেটের সঙ্গে কাজ করা অবশেষে কঠিন প্রমাণিত হয়, এবং জানুয়ারিতে বিষয়টি উপসংহারে পৌছে, যখন সাউথহ্যাম্পটনে একটি পরিবশেনায় যাত্রা পথে এক ব্যান্ড সদস্য ব্যারেটকে রাখার বিষয়ে জিজ্ঞাসা করছিলেন। গিলমোরের মতে, এর উত্তর ছিল "নাহ, আর বিরক্তি চাই না", যা ছিল পিংক ফ্লয়েডের সঙ্গে ব্যারেটের মেয়াদ শেষ হওয়ার পূর্ব সংকেত। ওয়াটার্স পরবর্তীতে এক স্বীকারোক্তিতে জানান যে, "সে আমাদের বন্ধু ছিল, কিন্তু বেশিভাগ সময় আমরা তাকে গলা টিপে ধরতে চেয়েছিলাম"। ১৯৬৮ সালের মার্চের প্রথমদিকে, পিংক ফ্লয়েড, ব্যান্ডের ভবিষ্যত বিষয়ে আলোচনা করবার জন্য ব্যবসা অংশীদার জেনার এবং কিংয়ের সঙ্গে সাক্ষাত করে; ব্যারেট দল ছেড়ে যেতে রাজি হয়। জেনার ও কিং, ব্যারেটকে ব্যান্ডের সৃজনশীল প্রতিভা বলে বিশ্বাস করেন, এবং তার প্রতিনিধিত্ব করতে ও পিংক ফ্লয়েডের সঙ্গে তার সম্পর্ক শেষ করার সিদ্ধান্ত নেন। মরিসন এরপর তার ব্যবসা এনইএমএস এন্টারপ্রাইজেসের নিকট বিক্রি করেন এবং ও'রোর্ক ব্যান্ডের ব্যক্তিগত ব্যবস্থাপক হয়ে ওঠেন। ১৯৬৮ সালের ৬ এপ্রিল, ব্ল্যাকহিল ব্যারেটের আনুষ্ঠানিক প্রস্থান ঘোষণা করেন। ব্যারেটের প্রস্থানের পর, গান রচনা এবং সৃজনশীল নির্দেশনাদানের ভার অধিকাংশে ওয়াটার্সের উপর বর্তায়। প্রাথমিকভাবে, গিলমোর, দলটির ইউরোপিয় টেলিভিশনে উপস্থিতিতে ব্যারেটের কন্ঠে মুকাভিনয় করেন; যদিও, বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্কিটে বাজানোর সময়, তারা ওয়াটার্স ও রাইটের "ইট উড বি সো নাইস" এবং "কেয়ারফুল উইথ দ্যাট এক্স, ইউজিন" গানের মাধ্যমে ব্যারেটের গানগুলি পরিহার করেছিলেন। আ সসারফুল অব সিক্রেট্‌স (১৯৬৮) ১৯৬৮ সালে, পিংক ফ্লয়েড তাদের দ্বিতীয় অ্যালবাম আ সসারফুল অব সিক্রেট্‌স রেকর্ডের জন্য অ্যাবি রোড স্টুডিওসে ফিরে আসে। তাদের ডিস্কোগ্রাফির এই অ্যালবামটিতে ছিল ব্যারেটের চূড়ান্ত অবদান, "জাগব্যান্ড ব্লুস"। ওয়াটার্স তার স্বরচিত গানে উন্নয়ন ঘটাতে শুরু করে, "সেট দ্য কন্ট্রোল্‌স ফর দ্য হার্ট অব দ্য সান", "লেট দেয়ার বি মোর লাইট" এবং "কর্পোরাল ক্লেগ" গানসমূহ অবদান রাখার মাধ্যমে। রাইট রচনা করেন "সি-স" এবং "রিমেম্বার অ্যা ডে"। নরম্যান স্মিথ দলটিকে তাদের স্ব-উৎপাদিত সঙ্গীত করতে উৎসাহিত করেন, এবং তারা তাদের বাড়িতেই নতুন উপাদান ডেমো রেকর্ড করতো। অ্যাবি রোডে স্মিথের নির্দেশে, তারা নিজেদের শৈল্পিক দৃষ্টি উপলব্ধ করতে রেকর্ডিং স্টুডিওর ব্যবহারিক জ্ঞান লাভ করে। যদিও, স্মিথ তাদের সঙ্গীতে অপ্রত্যয়ী ছিল, এবং যখন মেইসন "রিমেম্বার অ্যা ডে" গানে তার ড্রাম অংশ পরিবেশনে সংগ্রাম করছিল, স্মিথ তখন তার প্রতিস্থাপনের বিষয়ে এগুচ্ছিলেন। রাইট এই সেশন সম্পর্কে স্মিথের মনোভাব স্মরণ করে উল্লেখ করেন, "নরম্যান দ্বিতীয় অ্যালবামের উপর ছেড়ে দিয়েছিল ... তিনি সব সময় এমনটাই ইঙ্গিত করতেন, 'আপনি বিশ মিনিট যাবৎ এই হাস্যকর শব্দ করতে পারেন না'"। কেনোনা ওয়াটার্স কিংবা মেইসন সঙ্গীত পড়তে পারতেন না, অ্যালবামের শিরোনাম ট্র্যাক কাঠামো চিত্রিত করতে, তারা তাদের নিজস্ব স্বরলিপি পদ্ধতি উদ্ভাবন করে। গিলমোর পরবর্তীতে তাদের পদ্ধতি সম্বন্ধে বর্ণনা করেন, "একটি স্থাপত্য ডায়াগ্রামের মতো"। জুন ১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, অ্যালবামটি হিপনোসিসের স্টর্ম থরগের্সন এবং অউব্রে পাওয়েল কর্তৃক নকশাকৃত একটি সাইকেডেলিক প্রচ্ছদ উপস্থাপন করে। এটি পিংক ফ্লয়েডের বেশিরভাগ অ্যালবামের মধ্যে প্রথম, যেটি হিপনোসিস নকশা করে নি। এবং এটি দ্বিতীয় বারের মতো ইএমআই তাদের একটি দলকে অ্যালবামের মোড়ক পরিকল্পনার জন্য নকশাকারীদের চুক্তিবদ্ধ করতে অনুমতি দিয়েছিল। অ্যালবামটি ইউকে চার্টে ১১ সপ্তাহ অতিক্রম করে ৯ নম্বরে অবস্থান নিয়েছিল। রেকর্ড মিরর অ্যালবামটির সামগ্রিক অনুকূল পর্যালোচনা প্রকাশ করে, যদিও শ্রোতাদের "কোনো পার্টি ব্যাকগ্রাউন্ড সঙ্গীত হিসেবে" এটি না শোনার আহ্বান জানান। জন পিল শিরোনাম ট্র্যাকের সরাসরি পরিবেশনা সম্পর্কে বর্ণনা করেছেন যে, "একটি ধর্মীয় অভিজ্ঞতার মত", যেখানে এনএমই গানটিকে "দীর্ঘ এবং বিরক্তিকর" ... [সাথে] "একঘেঁয়ে" হিসেবে বর্ণনা করেছে। অ্যালবামটির ইউকে মুক্তির পর দিন, পিংক ফ্লয়েড প্রথমবারের মতো বিনামূল্যে হাইড পার্ক কনসার্টে পরিবেশন করে। জুলাই ১৯৬৮ সালে, তারা দ্বিতীয়বারের মতো যুক্তরাষ্ট্রে সফর করে। সফ্ট মেশিন ও দ্য হু ব্যান্ডের সাথে এটি পিংক ফ্লয়েডের প্রথম উল্লেখযোগ্য সফর হিসেবে বিবেচিত। সেই বছরের ডিসেম্বরে, তারা মুক্তি দেয় "পয়েন্ট মি অ্যাট দ্য স্কাই"; যেটি "সি এমিলি প্লে" পর্যন্ত মুক্তিপ্রাপ্ত দুটি এককের তুলনায় খুব একটা সফল ছিলো না, যা ব্যান্ডের "মানি"-এর পর ১৯৭৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত সর্বশেষ একক। উমাগুমা (১৯৬৯), অ্যাটম হার্ট মাদার (১৯৭০), এবং মেডল (১৯৭১) উমাগুমা মূলত তাদের পূর্বের অপ্রকাশিত কাজসমূহের প্রতিনিধিত্ব করেছে। ইএমআইয়ের হার্ভেস্ট লেবেলে একটি যুগল-এলপি (লং প্লে) হিসেবে অ্যালবামটি মুক্তি পেয়েছিল। এর প্রথম দুই সাইডে ম্যানচেস্টার কলেজ অব কমার্স এবং বার্মিংহামের মাদার্স ক্লাবে অনুষ্ঠিত সরাসরি পরিবেশনাগুলি অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। দ্বিতীয় এলপিতে ব্যান্ডের প্রতি সদস্যের একটি করে একক গানের পরীক্ষামূলক অবদান অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ১৯৬৯ সালের নভেম্বরে মুক্তির পর উমাগুমা ইতিবাচক পর্যালোচনা লাভ করে। অ্যালবামটি ইউকে চার্টে ২১ সপ্তাহ অতিক্রম করে ৫ নম্বর স্থানে অবস্থান নিয়েছিল। ১৯৭০ সালের অক্টোবরে, পিংক ফ্লয়েড অ্যাটম হার্ট মাদার মুক্তি দেয়। গানটির একটি প্রাথমিক সংস্করণ জানুয়ারিতে ফ্রান্সে প্রিমিয়ার হয়েছিল, কিন্তু রন গিসিন মতানৈক্যের ভিত্তিতে শব্দ সমস্যা সমাধানের অনুরোধ জানায়। গিসিন স্কোর উন্নতির জন্য খাটতে শুরু করেন, কিন্তু ব্যান্ডের ক্ষুদ্র সৃজনশীল ইনপুটের কারণে উৎপাদন কিছুটা অসুবিধাজনক ছিল। গীসিন, শেষ পর্যন্ত এই প্রকল্পের কাজ সম্পন্ন করেন জন আলদিসের সাহায্যে, যিনি ছিলেন রেকর্ডে কয়ার পরিবেশনের জন্য নিযুক্ত পরিচালক। স্মিথ, নির্বাহী প্রযোজকের কৃতিত্ব অর্জন করেন, এবং অ্যালবামটি ব্যান্ডের ডিস্কোগ্রাফিতে তার চূড়ান্ত প্রাতিষ্ঠানিক অবদান হিসেবে চিহ্নিত হয়। গিলমোর বলেন এটি ছিলো "বলার পরিস্কার উপায় যে তিনি কিছুই ... করেন নি"। ওয়াটার্স অ্যাটম হার্ট মাদার-এর সমালোচনা করেছিলেন, দাবী জানান যে, "এটি ডাস্টবিনে ছুঁড়ে ফেলা হলে এবং কখনোই আর কাউকে শুনতে না হলে" তিনি তাই পছন্দ করতেন"। গিলমোরও অ্যালবামটি সম্পর্কে সমধারণা পোষণ করেন এবং একবার এটিকে, "আবর্জনার স্তুব" হিসাবে বর্ণনা করে বলেন: "আমি মনে করি আমরা সে সময়ে কিছুটা নিরূদ্যম ছিলাম।" পিংক ফ্লয়েডের প্রথম নম্বর ১ অ্যালবাম, অ্যাটম হার্ট মাদার ব্রিটেনে ব্যাপকভাবে সফল হয়েছিল, এবং ইউকে চার্টে ১৮ সপ্তাহ অতিক্রম করেছিল। এটি ১৯৭০ সালের ২৭ জুন, বাথ উৎসবে প্রদর্শিত হয়েছিল। পিংক ফ্লয়েড, ১৯৭০ সালের দিকে ব্যাপকভাবে আমেরিকা ও ইউরোপ জুড়ে সঙ্গীত সফর করে। ১৯৭১ সালে, পিংক ফ্লয়েড মেলোডি মেকার নামে পাঠকের একটি জনমত সমীক্ষায় দ্বিতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছিল, এবং প্রথমবারের মত তারা মুনাফা তৈরি করতে সক্ষম হয়। মেইসন ও রাইট বাবা হন এবং লন্ডনে বাড়ি ক্রয় করেন। অন্যদিকে গিলমোর তখনো একা, যখন এসেক্সে একটি ১৯-শতকের খামারে স্থানান্তরিত হন তিনি। ওয়াটার্স ইজলিংটনে তার বাড়িতে বাগানের পেছনে একটি রূপান্তরিত টুল ছাউনির হোম রেকর্ডিং স্টুডিও স্থাপন করেন। ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে, তাদের অ্যাটম হার্ট মাদার সফর থেকে প্রত্যাবর্তনের পর পিংক ফ্লয়েড নতুন উপাদান তৈরির জন্য কাজ শুরু করে। একটি কেন্দ্রীয় ভাবনাবিহীন তারা কয়েকটি অনুৎপাদিত পরীক্ষার চেষ্টা চালায়। প্রকৌশলী জন ল্যাকি বর্ণনা করেছেন, যে প্রায়ই এই সেশন বিকালে শুরু হয়ে পরদিন ভোরে সমাপ্ত হত, "যে সময়ে কিছুই পাওয়া [সম্পন্ন করা] যাচ্ছিল না। তখন তাদের লেবেল ব্যবস্থাপককে দুই বোতল ওয়াইন এবং দুইটি জয়েন্ট সহকারে দেখা যাওয়া ব্যতীত তখন তাদের কোনো রেকর্ড কোম্পানির সঙ্গেও যোগাযোগ ছিল না"। ব্যান্ডটি প্রাথমিক শব্দ বা গিটার রিফের ওপর কাজ করে দীর্ঘ সময় ব্যয় করে। এছাড়াও তারা এয়ার স্টুডিওসে কয়েকদিন সময় ব্যয় করেছিল। গৃহস্থ বস্তুর বিভিন্ন সমন্বিত ব্যবহারে সঙ্গীত তৈরি করার প্রচেষ্টা চালায় তারা। একটি প্রকল্প যা দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন (১৯৭৩) এবং উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার (১৯৭৫) অ্যালবামে প্রতিয়মান। ১৯৭১ সালের অক্টোবরে মুক্তিপ্রাপ্ত, "মেডল শুধুমাত্র দলের সঙ্গে বাস্তব কার্যকরী সংমিশ্রণের মাধ্যমে লিড গিটারবাদক ডেভিড গিলমোরের উত্থান নিশ্চিত করার পাশাপাশি এটি জোরাল এবং সঠিকভাবে দলটিকে পুনরায় সমৃদ্ধ করে তোলে", লিখেছেন রোলিং স্টোন-এর জ্যান-চার্লস কোস্টা। এনএমই মেডল-কে "একটি অসাধারণ ভাল অ্যালবাম" মন্তব্য করে, "একোস" গাওয়ার জন্য তারা রীতিমত কঠোর পরিশ্রম করেছিল"। যদিও, মেলোডি মেকার'র মাইকেল ওয়াট্‌স এটিকে অনভিভূত হিসাবে আবিষ্কার করে বলেন, অ্যালবামটি "একটি অস্তিত্বহীন চলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাক", এবং পিংক ফ্লয়েডকে তাচ্ছিল্ল সুরে বলেন "অধিক শব্দ এবং উন্মত্ততা, যা কোনো কিছুই প্রকাশ করে না"। মেডল ১৯৬০-এর দশকের শেষে ব্যারেট-প্রভাবশালী দল এবং উদীয়মান পিংক ফ্লয়েডের মধ্যে একটি অর্ন্তবর্তীকালীন অ্যালবাম হিসাবে বিবেচিত। অ্যালবামটি ইউকে চার্টে ৮২ সপ্তাহ অতিক্রম করে ৩ নম্বরে অবস্থান নিয়েছিল। দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন (১৯৭২) পিংক ফ্লয়েড ১৯৭২-এর মে থেকে ১৯৭৩-এর জানুয়ারির মাঝামাঝি সময়ে দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন রেকর্ড করেছিল, অ্যাবি রোডে ইএমআই কর্মচারী প্রকৌশলী অ্যালান পারসন্স সহযোগে। শিরোনামটি জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিবর্তে বরং খ্যাপামিরর ইঙ্গিত। যুক্তরাজ্য, জাপান, উত্তর আমেরিকা এবং ইউরোপ সফরের সময় ব্যান্ডটি ডার্ক সাইড-এর উপাদান রচনা এবং পরিমার্জিত করেছিল। প্রযোজক ক্রিস থমাস পারসন্সকে সহায়তা করেন। অ্যালবাম মোড়কিকরণনের নকশা করেছিল হিপনোসিস, যেটি জর্জ হার্ডির কিংবদন্তি প্রতিসরণধর্মী প্রিজম নকশা অন্তর্ভুক্ত। থরগের্সনের ডার্ক সাইড অ্যালবাম প্রচ্ছদে একতার প্রতিনিধিত্বকারী সাদা আলোর একটি রশ্মি একটি প্রিজমের ভেতর অতিবাহিত হচ্ছে, যা সমাজের প্রতিনিধিত্ব করছে। ফলপ্রসুত রঙিন আলোর প্রতিসৃত রশ্মি একতা বিচ্ছুরিত হয়ে পড়ছে বলে প্রতীয়মান, অর্থাৎ এখানে একতা অনুপস্থিত। ওয়াটারস অ্যালবামের গানের একমাত্র লেখক। মার্চ ১৯৭৩ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত, এই এলপি ইউকে এবং সমগ্র ইউরোপ চার্ট জুড়ে তাৎক্ষণিক সাফল্য লাভ করে, এবং সমালোচকদের কাছ থেকে উৎসাহী প্রতিক্রিয়া অর্জন করে। রাইট ব্যতীত পিংক ফ্লয়েডের সকল সদস্য দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন-এর সংবাদ লিপি বর্জন করেছিল, কারণ সে সময় পর্যন্ত তাদের একটি কোয়াড্রোফোনিক মিশ্রণ সম্পন্ন হয় নি বলে, এবং নিম্ন-মানের স্টেরিও পিএ সিস্টেমের মাধ্যমে অ্যালবামের উপস্থাপন অপর্যাপ্ত ছিল বলে তারা মনে করেছিল। মেলোডি মেকারর রায় হোলিংওর্থ অ্যালবামটির প্রথম অংশকে "একচেটিয়া বিভ্রান্তি ... [এবং] অনুসরণ করা জটিল" হিসেবে বর্ণনা করেছেন, তবে দ্বিতীয অংশের প্রশংসা করে লিখেছেন: "গান, শব্দ ... [এবং] ছন্দ একেবারে নিরেট ... স্যাক্সফোন যেনো বাতাসে আঘাত করেছে, [আর] ব্যান্ডটি- রক অ্যান্ড রোল"। রোলিং স্টোনর লয়েড গ্রসম্যান এটিকে বর্ণনা করেছে, "এটি একটি বিন্যাস্ত এবং ধারণাগত সমৃদ্ধ অ্যালবাম যেটি শুধুমাত্র আমন্ত্রণই জানায় না, বরং এর সঙ্গে একাত্ম হতেই দাবী জানায়।" ১৯৭৩ সালের মার্চ জুড়ে, দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন পিংক ফ্লয়েডের মার্কিন সফরের অংশ হয়ে ওঠে। এটি সর্বকালের সর্বোচ্চ বাণিজ্যিকভাবে সফল রক অ্যালবামের একটি; চৌদ্দ বছরেরও বেশি সময় ধরে বিলবোর্ড শীর্ষ এলপি ও টেপ চার্টে তালিকাধীন থেকে, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৪৫ মিলিয়ন কপি বিক্রির সাফল্য অর্জনের মধ্য দিয়ে ইউএস চার্টে ১ নম্বরে অবস্থান নিয়েছিল। ব্রিটেনে, অ্যালবামটি ইউকে চার্টে ৩৬৪ সপ্তাহ অতিক্রম করে ২ নম্বরে অবস্থান নিয়েছিল। ডার্ক সাইড বিশ্বের তৃতীয় সেরা-বিক্রিত অ্যালবাম, এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ-বিক্রিত অ্যালবামে তালিকায় একুশতম স্থানে অবস্থান করে নেয়। অ্যালবামটির সাফল্য পিংক ফ্লয়ডের সদস্যদের জন্য বিপুল সম্পদ নিয়ে আসে। ওয়াটার্স এবং রাইট বড় কান্ট্রি হাউস ক্রয় করেছিলেন অন্যদিকে মেইসন হয়ে উঠেছিলেন দামি গাড়ি সংগ্রাহক। মার্কিন রেকর্ড কোম্পানি, ক্যাপিটল রেকর্ডসের সঙ্গে তাদের মোহমুক্তির পর, পিংক ফ্লয়েড এবং ও'রুরকে কলাম্বিয়া রেকর্ডসের সঙ্গে নতুন চুক্তি নিয়ে আলোচনা করেন, যারা তাদের $১,০০০,০০০ (US$ ডলার) ডলারের অগ্রিম রেকর্ড সম্মানী প্রদান করে। ইউরোপে, তারা হার্ভেস্ট রেকর্ডস কর্তৃক প্রতিনিধিত্ব শুরু করে। উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার (১৯৭৫) যুক্তরাজ্যে ডার্ক সাইড পরিবেশনার সফর শেষে, ১৯৭৫ সালের ১ জানুয়ারি পিংক ফ্লয়েড স্টুডিওতে ফিরে আসে তাদের নবম স্টুডিও অ্যালবাম উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার-এর কাজ শুরু করতে। পারসন্স তাদের সঙ্গে কাজ চালিয়ে যাবার প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করেন, মূলত তার অ্যালান পারসন্স প্রকল্প সফল হয়ে উঠতে শুরু করায়। তাই ব্যান্ডটি ব্রায়ান হ্যামফ্রিসের স্মরণাপন্ন হয়েছিল। প্রাথমিকভাবে, নতুন উপাদান রচনা তাদের পক্ষে জটিল হয়ে উঠেছিল; দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন-এর সাফল্য পিংক ফ্লয়ডকে কিছুটা শারীরিক ও মানসিকভাবে নিষ্কশিত করে। রাইট পরবর্তীতে এই সেশনটিকে প্রাথমিকভাবে "একটি কঠিন সময়ের মধ্যে পতন" বলে বর্ণনা করেছিলেন, এবং ওয়াটার্স নিজেদেরকে "অসরল" মন্তব্য করেছিলেন। গিলমোর ব্যান্ডের বিদ্যমান উপাদান উন্নয়নে অধিক আগ্রহী ছিলেন। অসমর্থিত বিয়ে মেইসনকে সাধারণ অসুবিধার মধ্যে রেখে তার মধ্যে উদাসীন অনুভূতির সৃষ্টি করেছিল, উভয় কারণের ফলে তার ড্রাম পরচিালনার ক্ষেত্রে বিপত্তি ঘটেছিল। সৃজনশীলতার অভাব সত্ত্বেও, কয়েক সপ্তাহ পরে ওয়াটার্স দলের কাছে একটি নতুন ধারণার দৃষ্টিগোচর করতে শুরু করে। ১৯৭৪ সালের মধ্যে, পিংক ফ্লয়েড তিনটি মূল রচনা সম্পন্ন করে, এবং তাদের ইউরোপে কনসার্টের একটি ধারাবাহিকে সেগুলো পরিবেশন করে। এই রচনাগুলি একটি নতুন অ্যালবাম শুরুর কেন্দ্রবিন্দু হয়ে ওঠে, যার উদ্বোধনী চার-নোটের গিটার ফ্রেস, গিলমোর কর্তৃক বিশুদ্ধরূপে রচিত হয়েছিল, যা ওয়াটার্সকে বারেটের স্মরণ করিয়ে দেয়। গানগুলি তাদের প্রাক্তন ব্যান্ড সদস্যের উত্থান ও পতনের একটি উপযুক্ত সারসংক্ষেপ প্রদান করে। ওয়াটার্স মন্তব্য করেছেন: "কারণ আমি যতোটা সম্ভব গূঢ়ভাবে সিডের অন্তর্ধান সম্পর্কে অনির্দিষ্ট, অনিবার্য বিষাদ তুলে আনতে চেয়েছিলাম ... [যা] আমি অনুভব করেছি।" যদিও পিংক ফ্লয়েড যখন অ্যালবামে কাজ করছিল, তখন স্টুডিওতে একবার ব্যারেটের অপ্রত্যাশিত আগমন ঘটে। থরগের্সন সে ঘটনা স্মরণ করে বলেন, "ব্যারেট সেখানে বসেছিল এবং স্বল্প আলাপ করেছিল, তবে সে সত্যিই যেন সেখানে ছিল না।" তার চেহারায় উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন ঘটেছিল, এর মাত্রা এতো অধিক ছিল যে ব্যান্ডটি শুরুতে তাকে চিনতে ব্যার্থ হয়। ওয়াটার্স এই অভিজ্ঞতায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন ছিল বলে জানা যায়। অধিকাংশ উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার ৫ জুলাই ১৯৭৫ সালে, নিবওর্থে একটি মুক্ত-মঞ্চ সঙ্গীত উৎসবে পরিবেশিত হয়। সেপ্টেম্বরে মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যালবামটি ইউকে এবং ইউএস চার্টে ১ নম্বরে অবস্থান নিয়েছিল। অ্যানিম্যাল্‌স (১৯৭৫) ১৯৭৫ সালে, পিংক ফ্লয়েড ইসিলিংটনে ৩৫ ব্রিটানিয়া রো একটি বহৃতলবিশিষ্ঠ গির্জা হলের সমষ্টি ক্রয় করে এবং ভবনটিকে একটি রেকর্ডিং স্টুডিও ও সংরক্ষণাগারে রূপান্তর করে। ১৯৭৬ সালে, তারা তাদের দশম অ্যালবাম অ্যানিম্যাল্‌স-এর রেকর্ড সমাপ্ত করে, নতুন ২৪-ট্যাক স্টুডিওতে। অ্যানিম্যাল্‌স-এর ধারণাটি মূলত ওয়াটার্সের সঙ্গে সম্ভূত হয়েছিল, কিছুটা জর্জ অরওয়েলের অ্যানিম্যাল ফার্ম (১৯৪৫) রাজনৈতিক কাহিনির ওপর ভিত্তি করে। অ্যালবামের গানগুলি কুকুর, শূকর ও ভেড়া হিসাবে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণির বর্ণনা করেছে। হিপনোসিস অ্যানিম্যাল্‌স-এর মোড়কিকরণের কৃতিত্ব অর্জন করে; যদিও, ওয়াটার্স চূড়ান্ত ধারণার নকশা করেছিলেন, প্রবীণ ব্যাটারসি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের একটি ছবি নির্বাচন করেন, যার ওপর তারা একটি উড়ন্ত শূকরের ছবি স্থাপন করেছিল। ব্যান্ড সদস্যদের মধ্যে রয়্যালটি ভাগ নিয়ে দ্বন্দ্বের উৎস ছিল, যারা প্রতি-গানের ভিত্তিতে রয়্যালটি অর্জন করতো। যদিও, গিলমোর "ডগ্‌স" গানের জন্য অধিকাংশে দায়বদ্ধ ছিল, যা অ্যালবামের প্রথম দিকে প্রায় সম্পূর্ণ অংশ জুড়ে রয়েছে। যদিও গিলমোরের প্রাপ্য ওয়াটার্সের চাইতে কম ছিল, যিনি অ্যালবামের বিপরীত পাশে তুলনামূলক ছোটো অংশের "পিগ্‌স অন দ্য উইং" গানে অবদান রেখেছেন। রাইট মন্তব্য করেন: "এটা আংশিকভাবে আমারই ভুল ছিল যে আমি নিজের উপাদানের জন্য জোড় খাটাই নি ... কিন্তু ডেভের (ডেভিড) প্রস্তাব রাখার কিছু থাকায় সে তা করেছিল, এবং শুধুমাত্র সেখানে দুইটি জিনিসের ব্যবস্থা সে করতে পেরেছিল।" মেইসন স্মরণ করে জানান: "সম্পূর্ণ ধারণা রজারের ছিল, কিন্তু তিনি সত্যিই ডেভকে (ডেভিড) অনেকটা অবমূল্যায়ন করেছিলেন, এবং ভেবেচিন্তে তাকে হতাশ করে তুলেছিলেন।" গিলমোর, তার প্রথম সন্তানের জন্মে বিক্ষিপ্তচিত্ত থাকায় অ্যালবামে সামান্য অবদান রেখেছিলেন। একইভাবে, মেইসন, রাইট কেউই অ্যানিম্যাল্‌স-এ ব্যাপক অবদান রাখেন নি। রাইট সে সময়ে বৈবাহিক জটিলতায় ভুগছিলেন, এবং এছাড়াও ওয়াটার্সের সঙ্গে তার সম্পর্কেরও ছিল দুর্দশা অবস্থা। অ্যানিম্যাল্‌স পিংক ফ্লয়েডের প্রথম অ্যালবাম যেখানে রাইটের একটি রচনার কৃতিত্ব অন্তর্ভুক্ত করা হয় নি, পরবর্তীতে তিনি এ-বিষয়ে মন্তব্য করেছিলেন: "অ্যানিম্যাল্‌স... নির্মাণ করবার জন্য উপভোগ্য রেকর্ড ছিল না ... যখন রজার সত্যিই বিশ্বাস করতে শুরু করছিলেন যে তিনিই ব্যান্ডের একমাত্র লেখক ... এটি ছিল শুধুমাত্র তার কারণেই যে [আমরা] এখনও চালিয়ে যাচ্ছি ... যখন তিনি তার অহংবোধ চর্চা শুরু করেন, তার শুধু আমারই সঙ্গে দ্বন্দ্ব থাকতে পারে।" ১৯৭৭ সালের জানুযারিতে মুক্তিপ্রাপ্ত, অ্যালবামটি ইউকে চার্টে ২ নম্বরে এবং ইউএস চার্টে ৩ নম্বরে অবস্থান নিয়েছিল। এনএমই অ্যালবামটির বর্ণনায় উল্লেখ করেছে, "সবচেয়ে চরম, নিরবধি, মর্মভেদী এবং সঙ্গীতের নিতান্ত প্রতিমাচূর্ণকারী", এবং মেলোডি মেকারর কার্ল ডালাস বলেছেন "এটি এমন এক মাধ্যমের মধ্যে বাস্তবতার অস্বাচ্ছন্দ্য স্বাদ যা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে পরিণত হয়ে ক্রমেই ক্রিয়াশীল থাকবে"। পিংক ফ্লয়েড তাদের "ইন দ্য ফ্লেশ" সফরের সময় অ্যালবামের অনেক উপাদান পরিবেশন করেছে। এটি ছিল কোনো বড় স্টেডিয়ামে তাদের বাজানোর প্রথম অভিজ্ঞতা, যার আকারে প্রায়ই তাদের অস্বস্তি হয়েছিল। ওয়াটার্স প্রতিটি ভেন্যুতে একা পৌঁছাতে শুরু করলেন, পরিবেশনের পর অবিলম্বে আবার প্রস্থান করতেন। এক অনুষ্ঠান থেকে রাইট ইংল্যান্ডে ফিরে এসে ব্যান্ড ছাড়ার হুমকি দেন। মন্ট্রিয়ল অলিম্পিক স্টেডিয়ামে, শ্রোতাদের সামনের সারিতে উচ্চণ্ড ও উৎসাহী ভক্তদের এক দল ওয়াটার্সকে এত অতিষ্ঠ করেছিল যে তিনি তাদের একজনের উপর ঝাপিয়ে পড়েছিলেন। সফর শেষে গিলমোরের জন্য একটি নিম্ন পয়েন্ট চিহ্নিত হয়েছিল, অনেকেই মনে করেছে যে ব্যান্ডটি তারা কাঙ্ক্ষিত সফলতা অর্জন করতে সক্ষম হলেও, নিজেদের জন্য কিছুই বাকি রাখে নি। ১৯৭৮–১৯৮৫: ওয়াটার্স-নেতৃত্বাধীন যুগ দ্য ওয়াল (১৯৭৮) ১৯৭৮ সালের জুলাইয়ে, অবহেলিত বিনিয়োগের ফলে আর্থিক সংকটে আবর্তীত হওয়ায়, ওয়াটার্স তাদের পরবর্তী অ্যালবামের জন্য দুটি মূল ধারণা দলের কাছে উপস্থাপন করেন। প্রথমটি ছিল ৯০-মিনিটের একটি ডেমো যার কাজের শিরোনাম ব্রিক্‌স ইন দ্য ওয়াল, এবং অন্যটি পরবর্তীতে ওয়াটার্সের প্রথম একক অ্যালবাম দ্য প্রস অ্যান্ড কন্স অব হিচ হাইকিং-এ পরিণত হতে দেখা যায়। যদিও মেইসন ও গিলমোর উভয়ই প্রথমে সচেতন ছিলেন, এবং তারা প্রথম ধারণাটিই তাদের আসন্ন অ্যালবামের জন্য নির্বাচন করেন। বব এজরিন অ্যালবামটির সহ-প্রযোজক, যিনি এই নতুন অ্যালবামের জন্য চল্লিশ-পাতার চিত্রনাট্য রচনা করেছিলেন। এজরিন গল্পটি রচনা করেছেন কেন্দ্রীয় চরিত্র পিংক-এর ওপর ভিত্তি করে— এটি একটি ধাঁচ চরিত্র যা ওয়াটার্সের শৈশব অভিজ্ঞতা থেকে অধিকাংশে অনুপ্রাণিত, যেখানে সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য ছিল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে তার বাবার মৃত্যু। এই প্রথম রুপকশোভিত ইট আরও সমস্যার নেতৃত্ব দিতে থাকে; পিংক মাদকাসক্ত হয়ে ওঠে এবং সঙ্গীত শিল্পের প্রতি বিষণ্ণ বোধ করে, অবশেষে একটি মেগালোমিনিয়াক অবস্থার মধ্যে তার রূপান্তর ঘটতে থাকে, যা আরও উন্নতরূপে সিড ব্যারেটের পতনের সঙ্গে আংশিকভাবে অনুপ্রাণিত। অ্যালবামের শেষে, ক্রমবর্ধমান ফ্যাসিবাদী শ্রোতা হিসেবে দেখানো হয় পিংক প্রাচীরের তল বিদীর্ণ করে দেয়, আরও একবার একজন নিয়মিত এবং যত্নশীল ব্যক্তি হয়ে উঠতে। দ্য ওয়াল রেকর্ডিংয়ের সময়, অ্যালবামে রাইটের উল্লেখযোগ্য অবদানের অভাবের কারণে ওয়াটার্স, গিলমোর এবং মেইসন ক্রমশ অসন্তুষ্ট ছিলেন। গিলমোর বলেন যে রাইট "অ্যালবামে কোনো মূল্যের বিশেষে অবদান রাখে নি—সে রেখেছে অতি, অতি সামান্য" এবং এই কারণেই তিনি "বাদ পড়েছিলেন"। মেইসনের মতানুযায়ী, "রিকের অবদান দ্রুত শুরু হয়, এবং কিছু না করা ছাড়াই সেশনে বসে থাকত, শুধু 'একজন প্রযোজক হওয়া ছাড়া'।" ওয়াটার্স মন্তব্য করেছেন: "[রাইট] রেকর্ড তৈরিতে সহযোগিতা করার জন্য প্রস্তুত ছিল না ... [এবং] এটি সকলের দ্বারা সম্মত ছিল ... [সে] হয়তো একটি দীর্ঘ সংগ্রামী হতে পরতো বা [সে] অ্যালবামটি সম্পন্ন করতে ... সম্মত হতে পারতো, [তার] সম্পূর্ণ ভাগ রাখা হতো ... কিন্তু শেষে [তিনি চাইলেন] শান্তভাবে চলে যেতে। রিক এ-বিষয়ে একমত হয়েছিলেন।" অ্যালবামটি "অ্যানাদার ব্রিক ইন দ্য ওয়াল (অংশ ২)" দ্বারা সমর্থিত, এবং "মানি" গানের পর এটি পিংক ফ্লয়েডের প্রথম একক গান যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যে চার্টে শীর্ষ স্থানে অবস্থান নিয়েছিল। ১৯৭৯ সালের ৩০ নভেম্বর অ্যারমাবটির আনুষ্ঠানিক মুক্তির পর, দ্য ওয়াল ১৫ সপ্তাহ ধরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিলবোর্ড চার্টে শীর্ষ অবস্থানে, এবং যুক্তরাজ্যে চার্টে তৃতীয় অবস্থানে ছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ২৩ মিলিয়ন প্রত্যয়িত সংখ্যক কপি বিক্রির মাধ্যমে দ্য ওয়াল আরআইএএ-এর সর্বকালের সেরা ১০০টি অ্যালবামের তালিকায় তৃতীয় স্থানে অবস্থান নিয়েছিল। অ্যালবামের প্রচ্ছদ ছিলো তাদের ইতোপূর্বের পরিমিত নকশার মধ্যে একটি, যেটি শুধুমাত্র একটি সাদা ইটের প্রাচীর এবং তাতে কোনও ট্রেডমার্ক বা ব্যান্ডের নামও নেই। এটি ব্যান্ডটির দ্য পাইপার অ্যাট দ্য গেটস্ অব ডউন অ্যালবামের পর আরেকটি অ্যালবাম প্রচ্ছদ যেটি হিপনোসিস নকশা করে নি। জেরাল্ড স্কার্ফ পরবর্তী সরাসরি অনুষ্ঠান, দ্য ওয়াল সফরের জন্য অ্যানিমেশনের একটি ধারাবাহিক তৈরি করেছিলেন। তিনি "মা", "প্রাক্তন স্ত্রী" এবং "বিদ্যালয় শিক্ষক" সহ কাহিনি থেকে বর্ণিত চরিত্রের প্রতিনিধিত্বকারী বৃহৎ পুতুল নির্মাণ করেছিলেন। পিংক ফ্লয়েড অ্যালবামটির জন্য তাদের পরিবেশনার সময় পুতুলগুলির ব্যবহার করে। ব্যান্ডের মধ্যেকার সম্পর্ক সেখানে সব সময় কম ছিল; তাদের চারটি উইনেবেগোস একটি বৃত্তে পার্ককৃত ছিল, আর সেগুলোর দরজা কেন্দ্র থেকে দূরে মুখোমুখি অবস্থায় ছিল। ওয়াটার্স ভেন্যুতে পৌঁছানোর জন্য ব্যক্তিগত গাড়ি ব্যবহার করেন ও ব্যান্ডের বাকিদের থেকে আলাদা হোটেলে অবস্থান করেন। রাইট একমাত্র শিল্পী হিসাবে মুনাফা লাভ করেন এবং বাকি চারজনের মধ্যে তিনি একমাত্র মুনাফা পান, যেখানে এই উদ্যোগটি প্রায় $৬০০,০০০ ডলার () হারায়। দ্য ওয়াল ধারণাটি পিংক ফ্লয়েড – দ্য ওয়াল নামে একটি চলচ্চিত্রে রূপান্তরিত হয়েছিল। যেটির মূল ধারণা ছিল সরাসরি কনসার্টের ফুটেজ এবং অ্যানিমেটেড দৃশ্যাবলীর সমন্বয়ে তৈরি। তবে, কনসার্টের ফুটেজ চলচ্চিত্রে ব্যবহারের জন্য অবাস্তব হিসাবে প্রমাণিত হয়। অ্যালান পার্কার সরাসরি সম্মত হন এবং একটি ভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করেন। যেখানে অ্যানিমেটেড ক্রমগুলি থাকবে, কিন্তু দৃশ্যাবলী কোন প্রকার সংলাপ ছাড়াই পেশাদার অভিনেতাদের দ্বারা অভিনীত হবে। ওয়াটার্সের স্ক্রিন পরীক্ষা করা হলেও দ্রুত তাকে বাদ দেয়া হয় এবং তারা বব গেল্ডফকে পিংক চরিত্রের জন্য চূড়ান্ত করেন। গেল্ডফ প্রাথমিকভাবে এটি উড়িয়ে দিয়েছিলেন, এবং দ্য ওয়াল-এর কাহিনিকে "বোললকস" হিসাবে নিন্দা করেছিলেন। অবশেষে একটি উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রে অংশগ্রহণের প্রত্যাশায় এবং তার কাজের জন্য একটি উচ্চ পারিশ্রমিক পাবার কারণে গেল্ডফ কাজ করতে সম্মত হন। ১৯৮২ সালের মে মাসে কান চলচ্চিত্র উৎসবে প্রদর্শনীর পর, পিংক ফ্লয়েড – দ্য ওয়াল জুলাইয়ে যুক্তরাজ্যে মুক্তি পায়। দ্য ফাইনাল কাট (১৯৮২) ১৯৮২ সালে, ওয়াটার্স স্পেয়ার ব্রিক্‌স কাজের শিরোনামের সাথে একটি নতুন বাদ্যযন্ত্র প্রকল্পের প্রস্তাব জানায়, যা মূলত পিংক ফ্লয়েড – দ্য ওয়ালের সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম হিসাবে বিবেচিত। ফকল্যান্ডস যুদ্ধের সূত্রপাতের পর ওয়াটার্স দিক পরিবর্তন করে নতুন উপাদান রচনা শুরু করেন। তিনি দেখেন যে, ফকল্যাণ্ডস আক্রমণে মার্গারেট থ্যাচারের প্রতিক্রিয়া মূলত উগ্র দেশপ্রেম ও অপ্রয়োজনীয়। তিনি অ্যালবামটি তার মৃত পিতাকে উৎসর্গ করেছিলেন। ওয়াটার্স এবং গিলমোরের মধ্যে তাৎক্ষণিক বিতর্ক দেখা দেয়, গিলমোর মনে করেন দ্য ওয়াল অ্যালবামের জন্য গৃহীত পুনরাবৃত্তি গানগুলির পরিবর্তে সমস্ত নতুন উপাদান অন্তর্ভুক্ত করা উচিত। ওয়াটার্স অনুভব করেছিলেন যে গিলমোর ব্যান্ডটির গীতিকার হিসাবে সামান্য অবদান রেখেছিলেন। দ্য ওয়াল-এর অর্কেস্ট্রাল ব্যবস্থাপনার একজন অবদানকারী মাইকেল কামেন দুইজনের মধ্যকার মধ্যস্থতা করেন এবং ঐতিহ্যগতভাবে অনুপস্থিত রাইটের ভূমিকা পালন করেন। ব্যান্ডটির মধ্যে চিন্তার বৃদ্ধি ঘটে। ওয়াটার্স এবং গিলমোর স্বাধীনভাবে কাজ করছেন; যদিও, গিলমোর স্ট্রেন অনুভব করতে শুরু করেছিলেন, মাঝে মাঝে তার সামঞ্জস্য বজায় রাখতে। চূড়ান্ত সংঘর্ষের পর, গিলমোরের নাম অ্যালবামের কৃতিত্ব তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়, যেহেতু ওয়াটার্সের মনে হয়েছিলো যে গীতিকবিতায় গিলমোরের অবদানের ঘাটতি ছিল। যদিও মেইসনের সাঙ্গীতিক অবদান স্বল্প ছিল, তিনি অ্যালবামে ব্যবহারযোগ্য একটি পরীক্ষামূলক হোলোফোনিক পদ্ধতি রেকর্ডিংয়ে ব্যস্ত ছিলেন। সে সময়ে মেইসনের বৈবাহিক সমস্যা চলছিলো। এবার পিংক ফ্লয়েড প্রচ্ছদ নকশার জন্য থোরজ্রেসনের সরণাপন্ন হন নি। ওয়াটার্স নিজেই প্রচ্ছদ নকশার পরিকল্পনা করেন। ১৯৮৩ সালের মার্চে মুক্তির পর, দ্য ফাইনাল কাট সরাসরি যুক্তরাষ্ট্রে এক নম্বর এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চার্টে ছয় নম্বর স্থানে অবস্থান নেয়। ওয়াটার্স সমস্ত গান রচনার পাশাপাশি অ্যালবামের সমস্ত সঙ্গীত রচনা করেছিলেন। গিলমোরের অ্যালবামের জন্য কোনও উপাদান সে সময়ে প্রস্তুত না থাকায় তিনি ওয়াটার্সকে কিছু গান লিখতে না পারা পর্যন্ত রেকর্ডিং বিলম্ব করতে বলেছিলেন, কিন্তু ওয়াটার্স তা করতে অস্বীকৃতি জানান। পরবর্তীতে গিলমোর মন্তব্য করেছেন: "অলসতার জন্য আমি অবশ্যই দোষী ছিলাম ... কিন্তু দ্য ফাইনাল কাট-এ কিছু খসরা ট্র্যাক রাখতে চাওয়া তার [ওয়াটার্স] উচিত হয় নি।" রোলিং স্টোন ম্যাগাজিন অ্যালবামটিকে পাঁচ তারকা প্রদান করে। যেখানে কার্ট লোডার এটি "একটি অসাধারণ অর্জন ... আর্ট রকের চরম মাষ্টারপিস" মন্তব্য করেন। লোডার দ্য ফাইনাল কাট-কে "মূলত রজার ওয়াটার্সের একক অ্যালবাম" হিসাবে বিবেচনা করেন। ওয়াটার্সের প্রস্থান এবং আইনি যুদ্ধ ১৯৮৪ সালে গিলমোর তার দ্বিতীয় অ্যালবাম, অ্যাবাউট ফেইস রেকর্ড করেন এবং জন লেননের হত্যাকাণ্ড থেকে ওয়াটার্সের সাথে তার সম্পর্ক পর্যন্ত, বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তার অনুভূতি প্রকাশ করার জন্য এটি ব্যবহার করেছিলেন। পরে বলেছিলেন যে, পিংক ফ্লয়েড থেকে নিজের দূরত্ব তৈরি করতে অ্যালবামটি ব্যবহার করেছেন তিনি। খুব শীঘ্রই, ওয়াটার্স তার প্রথম একক অ্যালবাম দ্য প্রস অ্যান্ড কন্স অব হিচ হাইকিং সফর শুরু করেন। রাইট ডেভ হ্যারিসের সাথে জী গঠন করেছিলেন এবং আইডেন্টিটি অ্যালবাম রেকর্ড করেছিলেন, যা মুক্তির পরে প্রায় অপরিচিতই ছিল। ১৯৮৫ সালে আগস্টে মেইসন তার দ্বিতীয় একক প্রকাশ প্রোফাইল্‌স প্রকাশ করেছিলেন। দ্য প্রস অ্যান্ড কন্স অব হিচ হাইকিং অ্যালবাম মুক্তির পর, ওয়াটার্স প্রকাশ্যে জোর দিয়ে বলেন যে পিংক ফ্লয়েড আর পুনর্মিলন করবে না। তিনি ভবিষ্যত রয়্যালটি পারিশ্রমিক নিষ্পত্তি বিষয়ে আলোচনা করতে 'ও'রউরকের সাথে যোগাযোগ করেন। 'ও'রউরকে, মেইসন এবং গিলমোরকে বিষয়টি অবহিত করা আবশ্যক মনে করেন, ফলে ওয়াটার্স রাগ হন এবং ব্যান্ড ব্যবস্থাপক হিসাবে তাকে বরখাস্ত করতে চেয়েছিলেন। তিনি 'ও'রউরকের সাথে তার ব্যবস্থাপনা চুক্তি বাতিল করেন এবং পিটার রুজকে তার বিষয়গুলি পরিচালনা করার জন্য নিযুক্ত করেন। ওয়াটার্স ইএমআই এবং কলাম্বিয়াকে তার ব্যান্ড ত্যাগ করার ঘোষণা দিতে লিখেছিলেন, এবং তাদেরকে তাদের চুক্তিবদ্ধ বাধ্যবাধকতা থেকে মুক্ত করার জন্য বলেছিলেন। গিলমোর বিশ্বাস করেন যে ওয়াটার্স পিংক ফ্লয়েডের ধ্বংসের আগেই দ্রুত চলে গেছেন। ওয়াটার্স পরবর্তীতে বলেছিলেন, নতুন অ্যালবাম তৈরি না করে পিংক ফ্লয়েড চুক্তির লঙ্ঘন করবে—যার ফলে রয়্যালটি পারিশ্রমিক স্থগিত করা হবে—এবং ব্যান্ডের অন্য সদস্যরা দলের কাছ থেকে তাকে মামলা করার হুমকি দিয়ে বাধ্য করেছিল। এরপর তিনি ব্যান্ডের নিষ্পত্তি ঘটাতে এবং পিংক ফ্লয়েড নাম ব্যবহার বন্ধ করার প্রচেষ্টায় উচ্চ আদালতে গিয়েছিলেন, পিংক ফ্লয়েডকে "সৃজনশীলভাবে একটি ব্যয়বহুল শক্তি ঘোষণা করে।" যখন ওয়াটার্সের আইনজীবী আবিষ্কার করেন যে দলের অংশীদারত্বটি কখনই আনুষ্ঠানিকভাবে নিশ্চিত করা হয় নি, তখন তিনি দলের নামের ব্যবহারে কর্তৃত্ববলে নিযেধাজ্ঞা (ভেটো) পাওয়ার চেষ্টা করতে উচ্চ অদালতে ফিরে আসেন। গিলমোর একটি সাবধানবাণীযুক্ত প্রেস রিলিজ প্রকাশ করে প্রতিক্রিয়া জানান যে পিংক ফ্লয়েড বিদ্যমান থাকবে। গিলমোর পরে দ্য সানডে টাইমসকে বলেছিলেন: "রজার একজন গর্তের কুকুর এবং আমি তার সঙ্গে লড়তে যাচ্ছি।" ২০১৩ সালে ওয়াটার্স বলেছিলেন যে তিনি পিংক ফ্লয়েড নামের ব্যান্ড সদস্যের বাণিজ্যিক মূল্যের স্বাধীনতা উপলব্ধি করতে ব্যর্থ হন এবং অন্যদের দ্বারা এর ব্যবহার বন্ধ করার চেষ্টা করে ব্যর্থ হয়েছিলেন। ১৯৮৫–১৯৯৪: গিলমোর-নেতৃত্বাধীন যুগ অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন (১৯৮৭) ১৯৮৬ সালে, ওয়াটার্স ব্যতীত পিংক ফ্লয়েডের প্রথম অ্যালবাম অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন-এর জন্য গিলমোর সঙ্গীতশিল্পীদের নিয়োগ করতে শুরু করেছিলেন। রাইটের ব্যান্ডে পুনরায় প্রবেশের আইনি বাধা ছিল, কিন্তু হ্যাম্পস্টেডের একটি বৈঠকের পর, পিংক ফ্লয়েড রাইটকে আসন্ন অধিবেশনগুলিতে অংশগ্রহণের আমন্ত্রণ জানায়। গিলমোর পরে বলেছিলেন যে রাইটের উপস্থিতি "তাদের আইনি ও সাঙ্গীতিকভাবে শক্তিশালী করে তুলবে", এবং পিংক ফ্লয়েড সাপ্তাহিক $১১,০০০ ডলারের বিনিময়ে রাইটকে নিযুক্ত করেছিল। রেকর্ডিং সেশন টেম্‌স নদীর পাড়ে গিলমোরের অ্যাস্টোরিয়া হাউসবোটে রেকর্ডিং শুরু হয়। গিলমোর এরিক স্টুয়ার্ট এবং রজার ম্যাকগফ সহ বেশকয়েকজন গীতিকারদের নিয়ে কাজ করলেও, অবশেষে অ্যালবামের গানগুলি লেখার জন্য এন্থনি মুরকে নির্বাচন করেছিলনে। পরবর্তীতে গিলমোর স্বীকার করেছিলেন যে প্রকল্পটি ওয়াটার্সের সৃজনশীল দিকনির্দেশনা ব্যতীত কঠিন ছিল। মেইসন, অ্যালবামে পরিবেশনার জন্য খুব-বেশি অনুশীলন করেন নি, তিনি ড্রামের অনেক অংশ সম্পন্ন করার জন্য সেশন সঙ্গীতশিল্পীদের ব্যবহার করেছেন। পরিবর্তে তিনি অ্যালবামের সাউন্ড এফেক্টে নিজেকে ব্যস্ত রেখেছিলেন। [[চিত্র:Pink Floyd (1989).jpg|thumb|১৯৮৯ সালে অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন]] সফরে পিংক ফ্লয়েড ১৯৮৭ সালের সেপ্টেম্বরে অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন মুক্তি পায়। অ্যালবামের প্রচ্ছদ নকশা করেছেন স্টর্ম থরগের্সন, যার সৃজনশীল অন্তর্ভুক্তি দ্য ওয়াল এবং দ্য ফাইনাল কাট অ্যালবামের পর থেকে অনুপস্থিত ছিল। ওয়াটার্স ব্যান্ড ছেড়ে চলে যাওয়ায় তাকে ছাড়াই, মেডেল অ্যলবামের এই প্রথম তারা অভ্যন্তরীন প্রচ্ছদে একটি দলগত আলোকচিত্র অন্তর্ভুক্ত করেছিল। অ্যালবামটি ইউকে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সরাসরি তিন নম্বর অবস্থানে স্থান করে নিয়েছিল। ওয়াটার্স মন্তব্য করেছেন: "আমার মনে হয়েছে এটি বেশ সাবলীল, কিন্তু বেশ চতুর জালিয়াতি ... গানগুলি সাধারণত দরিদ্রমানের ... [এবং] গিলমোরের গানগুলি তৃতীয় স্তরের।" যদিও গিলমোর প্রাথমিকভাবে অ্যালবামটি ব্যান্ডের শীর্ষ ফর্মটিতে ফিরে এসেছে হিসেবে বিবেচনা করেন, রাইট ভিন্নমত পোষণ করে বলেন, "রজারের সমালোচনাগুলি ন্যায্য। সবমিলিয়ে এটি ব্যান্ডের অ্যালবাম নয়।" কিউ ম্যাগাজিন অ্যালবামটি মূলত গিলমোরের একটি একাক অ্যালবাম হিসাবে বর্ণনা করেছে। এয়াটার্স মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে প্রবর্তকদের সাথে যোগাযোগ করে অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন সফর বাতির করার চেষ্টা চালিয়েছিল এবং যদি তারা পিংক ফ্লয়েড নামটি ব্যবহার করে তবে তাদের বিরুদ্ধে মামলা করার হুমকি দিয়েছিল। মেইসনের জামানতবিহীন ফারারি ২৫০ জিটিও ব্যবহার করে গিলমোর এবং মেইসন দুজনই সমভাবে প্রারম্ভিক খরচগুলি অর্থায়ন যোগাড় করেছিলেন। আসন্ন সফরের প্রাথমিক মহড়াগুলি অনেকটা বিশৃঙ্খল ছিল, মেইসন এবং রাইটের মহড়া সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল। নিজে অনেক-বেশি দ্বায়িত্ব নিয়েছেন অনুভব করে গিলমোর ইজরিনকে সাহায্য করার জন্য বললেন। পিংক ফ্লয়েড উত্তর আমেরিকা সফর সম্পন্ন করে, ওয়াটার্সের রেডিও কেএএওএসএস সফর আয়োজনও কাছাকাছি ছিল, যদিও প্রাক্তন ব্যান্ডের পারফরম্যান্স আয়োজনের তুলনায় তা অনেক ছোট স্থানে আয়োজিত হয়েছিল। উড়ন্ত শূকর ব্যবহার করায় কপিরাইট ফির জন্য ওয়াটার্স একটি রিট জারি করেন। ওয়াটার্সের নকশা থেকে আলাদা করার জন্য পিংক ফ্লয়েড অন্তর্নিহিত অংশে পুরুষ জননেন্দ্রিয়ের একটি বড় সেট সংযুক্ত করে প্রতিক্রিয়া জানান। ২৩ ডিসেম্বরে দুইপক্ষ একটি আইনি চুক্তিতে পৌঁছেছিল; মেইসন এবং গিলমোর চিরকালের জন্য পিংক ফ্লয়েড নাম ব্যবহার করার অধিকার অর্জন করে এবং ওয়াটার্স অন্যান্য বিষয়ের মধ্যরে দ্য ওয়াল-এর একচেটিয়া অধিকার লাভ করে। দ্য ডিভিশন বেল (১৯৯৪) বেশকয়েক বছর ধরে পিংক ফ্লয়েড তাদের ব্যক্তিগত কর্মকাণ্ডের সাথে নিজেদের ব্যস্ত রেখেছিল, যেমন লা ক্যার্রিয়া পানামেরিকানাতে চিত্রগ্রহণ ও প্রতিযোগিতা এবং ইভেন্টের উপর ভিত্তি করে একটি চলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাক রেকর্ডিং। জানুয়ারি ১৯৯৩ সালে, তারা একটি নতুন অ্যালবামে কাজ শুরু করতে ব্রিটানিয়া রো স্টুডিওসে ফিরে আসে, যেখানে গিলমোর, মেইসন এবং রাইট বেশকিছুদিন ধরে সহযোগিতামূলকভাবে কাজ করেছিল। প্রায় দুই সপ্তাহ পরে, তারা গান তৈরি শুরু করার জন্য যথেষ্ট ধারণা লাভ করেছিল। এজরিন অ্যালবামের সহ-প্রযোজনা করতে এগিয়ে আসেন এবং প্রযোজনাটি অ্যাস্টোরিয়ায় স্থানান্তরিত হয়, যেখানে ১৯৯৩ সালের ফেব্রুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত তারা প্রায় ২৫টি ধারণা নিয়ে কাজ করে। চুক্তিবদ্ধভাবে, রাইট সে সময়ে ব্যান্ডের সদস্য ছিলেন না এবং বলেন, "এটি এমন একটি বিন্দুতে পৌছেছিলো যেখানে আমি এই অ্যালবামতে কাজ করছি না।" যাইহোক, তিনি এই অ্যালবামে পাঁচটি সহ-রচনার কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন, ১৯৭৫ সালের উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার-এর এটি তার প্রথম পিংক ফ্লয়েড অ্যালবাম। অ্যালবামে আরেকটি গান রচনার কৃতিত্ব পান গিলমোরের ভবিষ্যত স্ত্রী পলি স্যামসন। এজরিনের মতে, "হাই হোপ্‌স", যা তিনি প্রাথমিকভাবে, "সমগ্র অ্যালবামটি একসঙ্গে টেনে নিয়েছিলেন", বেশকয়েকটি ট্র্যাক লিখতে সাহায্য করেছিলেন। অ্যালবামের অর্কেস্ট্রার অংশগুলি পরিচালনার জন্য তারা মাইকেল কামেনকে নিয়োগ দেয়; ডিক প্যারি এবং ক্রিস টমাসও এতে যুক্ত ছিলেন। লেখক ডগলাস অ্যাডামস অ্যালবামের শিরোনাম ঠিক করেন এবং থরগের্সন প্রচ্ছদের শিল্পকর্ম নির্মাণ করেন। থরগের্সন ইস্টার দ্বীপের মোয়াই মোনোলিথ বা একপ্র্রস্তরস্তম্ভগুলি থেকে অ্যালবামেরের প্রচ্ছদ অনুপ্রেরণা অর্জন করেছেন; দুইটি মুখোমুখি মুখ মিলে একটি তৃতীয় মুখ তৈরি করে যার বিষয়ে তিনি মন্তব্য করেছেন: "অনুপস্থিত মুখ—পিংক ফ্লয়েডের অতীত, বাকি দুইটি সিড এবং রজারের মুখ"। অ্যালবাম মুক্তির প্রতিযোগিতা এড়ানোর বিষয়ে আগ্রহী ছিলেন, যেমনটা অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন অ্যালবামের সময় ঘটেছে। পিংক ফ্লয়েড ১৯৯৪ সালের এপ্রিলে মুক্তির সময়সীমা নির্ধারণ করে, যে সময়ে তাদের সফর শুরু হবে অ্যালবাম যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১ নম্বর স্থানে পৌঁছেছিল। পাশাপাশি এটি ইউকে চার্টে ৫১ সপ্তাহ অতিবাহিত করেছিল। ২০০৯ সালের ২৯ মার্চ মিয়ামিতে সান বার্নার্ডিনো, ক্যালিফোর্নিয়ার নর্টন এয়ার ফোর্স বেসের হ্যাঙ্গারে দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মহড়া দেন, মিয়ামিতে প্রায় একই রাস্তার নিযুক্ত কর্মীবৃন্দ তাদের অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন সফরে কাজ করেছিল। তারা বিভিন্ন ধরনের পিংক ফ্লয়েড পছন্দ তালিকা থেকে গান পরিবেশ্ন করে এবং পরে দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন অন্তর্ভুক্ত করার জন্য তাদের সম্পূর্ণ তালিকাটি পরিবর্তন করআ হয়। এটি ছিল পিংক ফ্লয়েডের সর্বশেষ সফর, যা ১৯৯৪ সালের ২৯ অক্টোবর সমাপ্ত হয়। ২০০৫–২০১৬: পুনর্মিলন, মৃত্যু, এবং দি এন্ডলেস রিভার লাইভ এইট পুনর্মিলন ২০০৫ সালের ২ জুলাই, ওয়াটার্স, গিলমোর, মেইসন এবং রাইট লন্ডনের হাইড পার্কে লাইভ এইট কনসার্টে ২৪ বছরেরও বেশি সময় পর প্রথমবারের মতো পিংক ফ্লয়েড হিসাবে একসাথে পরিবেশন করেছেন। আয়োজক বব গেলডফ দ্বারা লাইভ এইট পুনর্মিলনের ব্যবস্থা করা হয়েছিল। শুরুতে গিলমোরের এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যানের পর, গেলডফ মেইসনকে অনুরোধ করলেন, ওয়াটার্সের সাথে যোগাযোগ করতে। প্রায় দুই সপ্তাহ পরে, ওয়াটার্স গিলমোরকে সাক্ষাতের জন্য আহবান জানায়, এবং দুই বছরের বেশি সময় পর সেই প্রথম তাদের কথোপকথন হয়। পরের দিন গিলমোর কনসার্টের বিষয়ে সম্মত হয়েছিলেন। প্রেসের এক বিবৃতিতে, ব্যান্ডটি লাইভ এইট ঘটনার প্রসঙ্গে তাদের সমস্যাগুলির গুরুত্বহীনতার উপর জোর দেয়। তারা লন্ডনের কনট হোটেলে তাদের সেটতালিকা তালিকাভুক্ত করেন। এরপর ব্ল্যাক আইল্যান্ড স্টুডিওসে তিন দিনের মহড়া দেন। তাদের অনুশীলন করা গানগুলির শৈলী এবং গতির বিষয়ে মতবিরোধ থাকায় সেশনগুলি সমস্যাযুক্ত ছিল; পরিবেশনার প্রাক্কালে চলমান ক্রমধারার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল। পরিবেশনার শুরুতে ছিল "উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার", ওয়াটার্স দর্শকদের বলেছিলেন: "[এটা] বেশ আবেগপ্রবণ, আনেক বছর পরে এই তিনজনের সঙ্গে এখানে দাঁড়িয়েছি, দাঁড়িয়েছি বাকিদের সাথে নিজেকে গণনা করার জন্য ... আমরা এসব করছি যারা এখানে নেই তাদের এবং বিশেষত সিডের জন্য।" শেষ পর্যন্ত, গিলমোর শ্রোতাদের ধন্যবাদ জানালেন এবং মঞ্চে ছেড়ে চলে যেতে ঘুরে দাঁড়ালেন। ওয়াটার্স তাকে ফিরে ডাকেন, এবং তারা সকলে আলিঙ্গন করেন। লাইভ এইট কনসার্টের পর সানডে সংবাদপত্রে তাদের এই আলিঙ্গনের ছবিটি জনপ্রিয়তা লাভ করে। ওয়াটার্স তাদের প্রায় ২০ বছরের বিদ্বেষ সম্পর্কে বলেন: "আমার মনে হয় যে ১৯৮৫ সালের পর থেকে আমাদের কেউ কোনও কৃতিত্বের জন্য আজ এখানে আসে নি ... এটি মন্দ ছিল, নেতিবাচক সময়, এবং আমি সেই নেতিবাচকতায় আমার অংশের জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি।" যদিও চূড়ান্ত সফরের জন্য পিংক ফ্লয়েড £১৩৬ মিলিয়ন মূল্যের চুক্তি স্থগিত করে দেয়। ওয়াটার্স পরিবেশন বাতিল না করে, এটি শুধুমাত্র একটি দাতব্য অনুষ্ঠান হওয়া উচিত বলে মনে করেছেন। তবে, গিলমোর এসোসিয়েটেড প্রেসকে জানান যে পুনর্মিলন ঘটবে না: "[লাইভ এইট] মগড়া আমাকে বিশ্বাস করিয়েছিল [যে] এটি এমন কিছু ছিল না যে আমি অনেক কিছু করতে চেয়েছিলাম ... মানুষের জীবন এবং কর্মজীবনে বিদায়ের মুহূর্তের সকল প্রকার এখানে ছিল যা তারা পরে অবরুদ্ধ করেছে, কিন্তু আমি মনে করি আমি মোটামুটি পরিষ্কারভাবে বলতে পারি যে কোনও সফর বা অ্যালবামে আমাদের পুনরায় অংশ নিতে হবে না। এটা বিদ্বেষ বা এমন কিছু নয়। এটা শুধুমাত্র ... আমি সেখানে ছিলাম, আমি যা করার করেছি।" ২০০৬ সালের ফেব্রুয়ারিতে, গিলমোরের ইটালিয় সংবাদপত্র লা রেপুব্লিকার গিনো কাস্টাল্ডোর এক সাক্ষাৎকারে ঘোষণা করেছেন: "ভক্তদের জন্য শোকের ধৈর্য। সংবাদটি প্রাতিষ্ঠানিক। পিংক ফ্লয়েড ব্র্যান্ড বিলুপ্ত, সমাপ্ত, নিশ্চিতভাবে মৃত।" পিংক ফ্লয়েডের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করলে গিলমোর প্রতিক্রিয়া জানায়: "এটা শেষ হয়ে গেছে ... আমার যথেষ্ট করেছি। আমি ৬০ বছর বয়সী ... এখন আমার নিজের কাজ করার জন্য এটি বেশি আরামদায়ক।" গিলমোর এবং ওয়াটার্স বার-বার বলেছিলেন যে তাদের পূর্বের সদস্যদের সাথে পুনরায় মিলিত হওয়ার কোনো পরিকল্পনা ছিল না। ব্যারেট এবং রাইটের মৃত্যু ব্যারেট ২০০৬ সালের ৭ জুলাই কেমব্রিজে তার বাড়িতে ৬০ বছর বয়সে মারা যান। ২০০৬ সালের ১৮ জুলাই কেমব্রিজ ক্রিমেটোরিয়ামে তার অন্ত্যেষ্টিক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়; পিংক ফ্লয়েডের কোন সদস্য উপস্থিত ছিলেন না। রাইট মন্তব্য করেছেন: "সিড ব্যারেটের মৃত্যুতে ব্যান্ড খুব স্বাভাবিকভাবেই মর্মাহত এবং দুঃখিত। সিড গোড়ার দিকে ব্যান্ডের লাইন-আপের পথনির্দেশক আলো ছিল এবং একটি লিগ্যাসি রেখে যান যা অনুপ্রাণিত করা অব্যাহত রেখেছিল।" যদিও ৩৫ বছর ধরে ব্যারেট অস্পষ্টতায় পড়ে গিয়েছিলেন, তবে সঙ্গীততে তার অবদানের জন্য জাতীয় প্রেস তাকে প্রশংসা করেছিল। ২০০৭ সালের ১০ মে, ওয়াটার্স, গিলমোর, রাইট এবং মেইসন লন্ডনের বার্বিনিকান সেন্টারে বারেটের শ্রদ্ধাসূচক কনসার্ট "ময়াডকাপ'স লাস্ট লাফ" এ পরিবেশন করেন। গিলমোর, রাইট এবং মেইসন ব্যারেটের সুরোচিতো "বাইক" এবং "আরনল্ড লেইন" এবং ওয়াটার্স তার "ফ্লিকারিং ফ্লেম"-এর একটি একক সংস্করণ পরিবেশন করেন করেন। ২০০৮ সারের ২৫ সেপ্টেম্বর, ৬৫ বছর বয়সে ক্যান্সারে রাইট মারা যান। তার প্রাক্তন ব্যান্ড সহচারী তার জীবন ও কাজে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছিল। গিলমোর বলেন: "পিংক ফ্লয়েড কে বা কী ছিল তা নিয়ে বিতর্কের সূচনায়, রিকের (রাইট) বিশাল অর্ন্তভূক্তি প্রায়শই বিস্মৃত। তিনি ছিলেন অমায়িক, নিরভিমান এবং নিভৃত কিন্তু তার গভীর বা উচ্চ ভাবপূর্ন কণ্ঠ এবং বাজানো ছিলো অত্যাবশ্যক, যা আমাদের সবচেয়ে স্বীকৃত পিংক ফ্লয়েড শব্দের ঐন্দ্রজালিক উপাদান ছিল।" রাইটের মৃত্যুর এক সপ্তাহ পর, গিলমোর আ সসারফুল অব সিক্রেট্‌স অ্যঅলবাম থেকে রাইটের রচিত এবং গাওয়া "রিমেমবার অ্যা ডে" গানটি পরিবেশন করেছিলেন, রাইটের সম্মানে। কিবোর্ডবাদক কিথ এমারসন রাইটকে পিংক ফ্লয়েডের "কশেরুকা" হিসাবে প্রশংসা করে একটি বিবৃতি প্রকাশ করেছেন। আরও পরিবেশনা এবং পুন-মুক্তি ২০১০ সালের ১০ জুলাই, ওয়াটার্স এবং গিলমোর হোপিং ফাউন্ডেশনের জন্য একটি দাতব্য অনুষ্ঠানে একসাথে পরিবেশন করেন। প্যালেস্টাইনের শিশুদের জন্য অর্থোপার্জন করা এই অনুষ্ঠানটি ইংল্যান্ডের অক্সফোর্ডশায়ারের কিডিংটন হলে প্রায় ২০০ জন দর্শকের উপস্থিতি ছিল। এই অনুষ্ঠানে ওয়াটার্সের ফিরে আসার বিনিময়ে, ২০১১ সালের ১২ মে লন্ডনের ওটু এরিনায় ওয়াটার্সের দ্য ওয়াল পরিবেশনায় গিলমোর "কমফোর্টেবলি নাম্ব" পরিবেশনা করেছিলেন, যেখানে তিনি গিটার সলো বাজানোর পাশাপাশি কোরাস গেয়েছিলেন। মেইমেসনও যোগ দেন, গিলমোরের সাথে "আউটসাইড দ্য ওয়াল" গানে ম্যান্ডোলিনের জন্য টাম্বোরিন বাজান। ২০১১ সালের ২৬ সেপ্টেম্বর হোয়াই পিংক ফ্লয়েড ...? শিরোনামে পিংক ফ্লয়েড এবং ইএমআই একটি সম্পূর্ণ পুনঃপ্রকাশ প্রচারণা শুরু করেছিল। "এক্সপেরিয়েন্স" এবং "ইমমের্শন" মাল্টি-ডিস্ক মাল্টি-ফর্ম্যাট সংস্করণ সহ তাদের ব্যাক ক্যাটালগুলি পুনরায় নতুন রিমাস্টার করা সংস্করণে প্রকাশ করে। অ্যালবামগুলির রিমাস্টার করেছিলেন দ্য ওয়াল-এর সহ-প্রযোজক জেমস গাথরি। ২০১৫ সালের নভেম্বর মাসে, পিংক ফ্লয়েড ১৯৬৫: দেয়ার ফার্স্ট রেকর্ডিং শিরোনামে একটি সীমিত সংস্করণ ইপি প্রকাশ করেছিল, যাতে দ্য পাইপার অ্যাট দ্য গেট্‌স অব ডউন-এ রেকর্ড করা ছয়টি গান রয়েছে। দি এন্ডলেস রিভার (২০১৪) ২০১২ সালে, প্রধানত দ্য ডিভিশন বেল অ্যালবামের সেশনগুলির সময়ে গিলমোর এবং মেইসন রাইটের সাথে তৈরি রেকর্ডিং পুনর্বিবেচনার সিদ্ধান্ত নেন, একটি নতুন পিংক ফ্লয়েড অ্যালবাম তৈরির জন্য। তারা নতুন অংশ রেকর্ড করতে এবং "সাধারণত হারনেস স্টুডিও প্রযুক্তি"-তে সাহায্য করার জন্য সেশন সঙ্গীতশিল্পীদের নিয়োগ দেন। ওয়াটার্স একাজে জড়িত ছিলের না। মেইসন অ্যালবামটিকে রাইটের প্রতি শ্রদ্ধা হিসাবে বর্ণনা করেছেন: "আমি মনে করি তিনি [রাইট] যা করেছেন এবং তার কাজ কীভাবে পিংক ফ্লয়েড সাউন্ডের হৃদয়ে স্বীকৃতি প্রদানের এই রেকর্ডটি একটি ভাল উপায়। পারানো সেশনে শুনতে গিয়ে, এটা সত্যিই মনে হয় যে তিনি একজন বিশেষ বাদক চিলেন যা আমাকে ঘরে ফিরিয়ে আনে।" দি এন্ডলেস রিভার ২০১৪ সালের ৭ নভেম্বর মুক্তি পায়। ২০১৪ সালে দ্য ডিভিশন বেল-এর ২০তম বার্ষিকী সংস্করণ প্রকাশের পর পার্লোফোন কর্তৃক পরিবেশিত এটি পিংক ফ্লয়েডে দ্বিতীয় অ্যালবাম। যদিও এটি মিশ্র পর্যালোচনা লাভ করলেও, এটি অ্যামাজন ইউকে-এর সর্বকালের সর্বাধিক প্রি-অর্ডার অ্যালবাম হয়ে উঠে, এবং বেশ কয়েকটি দেশে এটি প্রথম স্থানে অবস্থান নেয়। এটির ভাইনাল সংস্করণ ২০১৪ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত অ্যালবামের মধ্যে দ্রুততম বিক্রি হওয়া ইউকে ভাইনাল মুক্তি এবং ১৯৯৭ সাল থেকে দ্রুততম বিক্রি হওয়া ভাইনাল সংস্করণ ছিলো। গিলমোর দ্য এন্ডলেস রিভার-কে পিংক ফ্লয়েডের সর্বশেষ অ্যালবাম হিসেবে মন্তব্য করেন: "আমি মনে করি আমরা সফলভাবে যা অর্জন করেছি তার সফলদতার অধিকার আমাদের রয়েছে ... এটি লজ্জাজনক, কিন্তু এটাই শেষ।" অ্যালবামটি সমর্থন করার জন্য এর কোন সফর ছিল না, এ বিষয়ে গিলমোর মনে করেন যে রাইট ছাড়া এটি "এক ধরনের অসম্ভব" বিষয়।</span> ২০১৫ সালের আগস্টে, গিলমোর পুনর্ব্যক্ত করেছিলেন যে পিংক ফ্লয়েড "সম্পন্ন" হয়েছে এবং রাইট ছাড়া এর পুনর্মিলন করা "ভুল হবে"। ২০১৬ সালের নভেম্বরে, পিংক ফ্লয়েড দ্য আর্লি ইয়ার্স ১৯৬৫–১৯৭২ শিরোনামে একটি বক্সসেট মুক্তি দেয়, যেখানে আউটটেক, সরাসরি রেকর্ডিং, রিমিক্স, এবং তাদের প্রাথমিক কর্মজীবন থেকে চলচ্চিত্র অন্তর্ভুক্ত। ২০১৯ সালের নভেম্বরে এটির পরবর্তী সংস্করণ দ্য লেটার ইয়ার্স ১৯৮৭–২০১৯ প্রকাশ করা হবে, যেখানে থাকবে ওয়াটার্স পরবর্তী পিংক ফ্লয়েডের কাজের সংকলন, রাইট এবং মেইসনের বিস্তৃত অবদানসহ অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন (১৯৮৭) অ্যালবামের একটি "হালনাগকৃত ও রিমিক্সকৃত" সংস্করণ, এবং মূল প্রকাশ থেকে বাদ দেওয়া ট্র্যাক সহ ১৯৮৮ সালের ডেলিকেট সাউন্ড অব থান্ডার সরাসরি অ্যালবামের একটি বর্ধিত পুনঃপ্রকাশ। ২০১৮ সালে, মেইসন পিংক ফ্লয়েডের প্রাথমিক উপাদান পরিবেশনের উদ্দেশ্যে নিক মেইসন'স সসারফুল অব সিক্রেট্‌স নামে একটি নতুন ব্যান্ড গঠন করেন। ব্যান্ডটি স্প্যান্ডাউ ব্যালের গ্যারি কেম্প এবং দীর্ঘদিনের পিংক ফ্লয়েড সহযোগি গাই প্র্যাটকে অন্তর্ভুক্ত দলে করে। তারা ২০১৮ সালের সেপ্টেম্বরে ইউরোপ, এবং ২০১৯ সালে উত্তর আমেরিকা সফর করেছিল, নিউ ইয়র্ক সিটির বীকন থিয়েটারে ওয়াটার্স যখন "সেট দ্য কন্ট্রোল্‌স ফর দ্য হার্ট অব দ্য সান" পরিবেশনের জন্য ভোকাল হিসেবে ব্যান্ডে যোগ দিয়েছিলেন। সদস্য সিড ব্যারেট – লিড এবং রিদম গিটার, ভোকাল (১৯৬৫–১৯৬৮) (২০০৬-এ মৃত্যু ) ডেভিড গিলমোর – লিড এবং রিদম গিটার, ভোকাল, বেস, কিবোর্ড, সিন্থেজাইজার (১৯৬৭–১৯৯৪, ২০০৫, ২০০৭, ২০১৩–২০১৪, ২০২২) রজার ওয়াটার্স – বেস, ভোকাল, রিদম গিটার, সিন্থেজাইজার (১৯৬৫–১৯৮৫, ২০০৫) রিচার্ড রাইট – কিবোর্ড, পিয়ানো, অর্গান, সিন্থেজাইজার, ভোকাল (১৯৬৫–১৯৭৯, ১৯৯০–১৯৯৪, ২০০৫, ২০০৭) (touring/session member ১৯৭৯–১৯৮১ এবং ১৯৮৬–১৯৯০) (২০০৮-এ মৃত্যু) নিক মেইসন – ড্রাম, পারকাশন, ভোকাল (১৯৬৫–১৯৯৪, ২০০৫, ২০০৭, ২০১৩–২০১৪, ২০২২) সাঙ্গীতিক দক্ষতা ধারা যুক্তরাজ্যের প্রথম দিককার সাইকেডেলিক সঙ্গীত দলগুলির একটি হিসাবে বিবেচিত, পিংক ফ্লয়েড অগ্রদূত হিসাবে তাদের সঙ্গীতজীবন শুরু করেছিল লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড সঙ্গীতের মাধ্যমে। কেউ-কেউ তাদের কাজকে স্পেস রক হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ করে। রোলিং স্টোনের মতে: "১৯৬৭ থেকে, তারা অভ্রান্তচিত্তে সাইকেডেলিক শব্দ বিকাশে অবদান রাখছে, বিস্তৃত পরিবেশনা, উচ্চতর সুটেলাইক রচনা যা হার্ড রক, ব্লুজ, দেশাত্ববোধক, লোক এবং ইলেকট্রনিক সঙ্গীতকে স্পর্শ করেছে।" ১৯৬৮ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত "কেয়ারফুল উইথ দ্যাট এক্স, ইউজিন" গানটি আর্ট রক দল হিসাবে তাদের খ্যাতি আরও বাড়িয়ে তুলতে সহায়তা করেছিল। ব্যান্ডের ক্ষেত্রে বিবেচিত অন্যান্য ধারাগুলির মধ্যে রয়েছে পরীক্ষামূলক রক, অ্যাসিড রক, প্রোটো-প্রোগ, পরীক্ষামূলক পপ (ব্যারেটের অধীনে থাকাকালীন), এবং সাইকেডেলিক পপ। ১৯৬০-এর দশকের শেষের দিকে, গণমাধ্যমগুলি তাদের সঙ্গীতকে প্রগ্রেসিভ রক লেবেল যুক্ত করতে শুরু করেছিল। ও'নিল সার্বার পিংক ফ্লয়েডের সঙ্গীত সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন: Rarely will you find Floyd dishing up catchy hooks, tunes short enough for air-play, or predictable three-chord blues progressions; and never will you find them spending much time on the usual pop album of romance, partying, or self-hype. Their sonic universe is expansive, intense, and challenging ... Where most other bands neatly fit the songs to the music, the two forming a sort of autonomous and seamless whole complete with memorable hooks, Pink Floyd tends to set lyrics within a broader soundscape that often seems to have a life of its own ... Pink Floyd employs extended, stand-alone instrumentals which are never mere vehicles for showing off virtuoso but are planned and integral parts of the performance. ১৯৬৮ সালে রাইট পিংক ফ্লয়েডের ধ্বনিত খ্যাতি সম্পর্কে মন্তব্য করেছিলেন: "আমদের প্রথম ব্রিটিশ সাইকিডেলিক দল হিসাবে দেখা মুশকিল। কেনোনা আমরা কখনও নিজেদের সেভাবে দেখিনি ... সবশেষে, আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে আমরা ছিলাম, কেবল মজা করে বাজিয়েছিলাম ... গানের কোনও বিশেষ রূপের মধ্যে আবদ্ধ ছিলাম না, আমরা যা চেয়েছিলাম তা করতে পারতাম ... দৃঢ়ভাবে স্বতঃস্ফূর্ততা এবং তাৎক্ষণিক উদ্ভাবনের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলাম।" ওয়াটার্স ব্যান্ডের প্রাথমিক শাব্দিক উৎপাদন সম্পর্কে কম উৎসাহী মূল্যায়ন জানিয়েছেন: "এ সম্পর্কে 'মহান' কিছুই ছিল না। আমরা হাস্যকর ছিলাম। আমরা অকেজো ছিলাম। আমরা মোটেও বাজাতে পারতাম না তাই আমেদের নির্বোধ এবং 'পরীক্ষামূলক' কিছু করতে হয়েছিল... সিড ছিল প্রতিভাবান, তবে আমি ঘণ্টার পর ঘণ্টা "ইন্টারস্টেলার ওভারড্রাইভ" বাজাতে ফিরে যেতে চাই না।" প্রচলিত পপ গঠন দ্বারা নিয়ন্ত্রিত, পিংক ফ্লয়েড ছিল ১৯৭০-এর দশকে প্রোগ্রেসিভ রক এবং ১৯৮০-এর দশকে পরিবেষ্টিত সঙ্গীতের উদ্ভাবক। গিলমোরের গিটারের কাজ রোলিং স্টোন-এর সমালোচক অ্যালান ডি পেরনা গিলমোরের গিটারের কাজকে পিংক ফ্লয়েডের শব্দের সাথে অবিচ্ছেদ্য বলে প্রশংসা করেছিলেন, এবং তাকে ১৯৭০-এর দশকের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গিটারবাদক হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন, "হেন্ডরিক্স এবং ভ্যান হ্যালেনের মধ্যে অনুপস্থিত সংযোগ"। রোলিং স্টোন তাকে সর্বকালের ১৪তম শ্রেষ্ঠ গিটারবাদক হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে। ২০০৬ সালে, গিলমোর তার কৌশল সম্পর্কে বলেছিলেন: "[আমার] আঙ্গুলগুলি স্বতন্ত্র শব্দ করে ... [তারা] খুব বেগবান নয়, তবে আমি মনে করি আমি তাৎক্ষণিকভাবে শনাক্তসক্ষম ... আমি যেভাবে সুরগুলি বাজিয়েছি তা হ্যাঙ্ক মারভিন এবং দ্য শ্যাডো-এর সুরের সাথে সংযুক্ত।" গিলমোরের সামর্থ বা সৌন্দর্যের ত্যাগ ছাড়াই নিজেকে প্রকাশ করার জন্য সবচেয়ে কম নোট ব্যবহারের ক্ষমতা জ্যাজ ট্রাম্পটার মাইলস ডেভিসের তুলনায় অনুকূল বিবেচিত। ২০০৬ সালে, গিটার ওয়ার্ল্ড-এর লেখক জিমি ব্রাউন গিলমোরের গিটারের শৈলীকে "সরল, হিউজ-সাউন্ডিং রিফস; ঔদরিক, সু-গতিযুক্ত সলো এবং সমৃদ্ধ, পরিবেষ্টিত কর্ডাল টেক্সচারের দ্বারা চিহ্নিত" বলে বর্ণনা করেছিলেন।" ব্রাউনের মতে, "মানি", "টাইম" এবং "কমফোর্টেবলি নাম্ব" গানে গিলমোরের সলো "কুয়াশার মাধ্যমে লেজার রশ্মির মতো মিশ্রণ ভেদ করতে সক্ষম।" ব্রাউন "টাইম" গানটিকে কেবল "বাচনভঙ্গি এবং অনুপ্রেরণা বিকাশের একটি মাস্টারপিস" হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন ... গিলমোর তার প্রাথমিক ধারণাটি নিয়ে নিজের গতিতে বাজিয়ে গেছেন।" ব্রাউন গিলমোরের বাচনভঙ্গিকে স্বজ্ঞাত এবং সম্ভবত লিড গিটারবাদক হিসাবে এটিই তার সেরা সম্পদ হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন। নিজের স্বাতন্ত্র স্বর অর্জন করার প্রসঙ্গে গিলমোর ব্যাখ্যা করেছেন: "আমি সাধারণত একটি ফাজ বাক্স, একটি বিলম্ব এবং একটি উজ্জ্বল ইকিউ সেটিং ব্যবহার করি ... গাওয়ার গতি ধরে রাখতে ... প্রতিক্রিয়া প্রান্তিকের কাছাকাছি—আপনাকে উচ্চস্বরে বাজাতে হবে। এটি বাজানো আরও মজাদার ... যখন বাঁকানো নোটগুলি আপনার কাছে একটি রেজার ব্লেডের মতো ঠিক টুকরো টুকরো হয়ে ওঠে।" ধ্বনিত নিরীক্ষণ পুরো কর্মজীবন জুড়ে, পিংক ফ্লয়েড তাদের শব্দ নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করেছিল। তাদের দ্বিতীয় একক, "সি এমিলি প্লে" লন্ডনের কুইন এলিজাবেথ হলে ১২ মে ১৯৬৭ সালে প্রদর্শিত হয়েছিল। পরিবেশনের সময়, ব্যান্ডটি প্রথমে অ্যাজিমুথ কো-অর্ডিনেটর নামে পরিচিত একটি প্রাথমিক চতুষ্কোণ যন্ত্রের ব্যবহার করেছিল। যন্ত্রটিতে নিয়ন্ত্রণযোগ্য ছিলো, যা সাধারণত রাইটের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হত এবং ব্যান্ডের প্রশস্ত শব্দ, রেকর্ড কৃত টেপগুলির সাথে মেলাতে, অনুষ্ঠানস্থানের প্রায় ২৭০ ডিগ্রি অংশে শব্দ সৃষ্টি করতে সক্ষম ছিল যা একটি ধ্বনিত ঘূর্ণায়মান প্রভাব সৃষ্টি করে। ১৯৭২ সালে, তারা একটি প্রছন্দসই নির্মিত পিএ কিনেছিল যা একটি উন্নততর চার-চ্যানেল এবং ৩৬০-ডিগ্রি ব্যবস্থা সম্পন্ন। পিংক ফ্লয়েডের "অন দ্য রান", "ওয়েলকাম টু দি মেশিন", এবং "ইন দ্য ফ্লেশ?"-এর মতো অংশে এয়াটার্স ভিসিএস থ্রি সিন্থেসাইজার পরীক্ষা করেছিলেন। "ওয়ান অব দিস ডেস" গানের জন্য তার বেস-গিটার ট্র্যাকের উপর বিনসন ইকোরাক ২ বিলম্বের এফেক্ট ব্যবহার করেছিলেন। দ্য ফাইনাল কাট অ্যালবাম রেকর্ডিংয়ের সময় পিংক ফ্লয়েড অভিনব সাউন্ড এফেক্ট এবং আর্ট অডিও রেকর্ডিং প্রযুক্তি ব্যবহার করেছিল। অ্যালবামে মেইসনের অবদানগুলি প্রায় সম্পূর্ণরূপে পরীক্ষামূলক হলোফোনিক ব্যবস্থার মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, এটি একটি ত্রি-মাত্রিক প্রভাব অনুকরণ করতে ব্যবহৃত অডিও প্রক্রিয়াকরণ কৌশল। এই ব্যবস্থায় এমন একটি এফেক্ট তৈরি করতে প্রচলিত স্টেরিও টেপ ব্যবহার করা হয়েছিল যার ফলে শব্দ শ্রোতাদের মাথার চারপাশে আবর্তিত হয়েছে যেনো হেডফোন কানে শোনার অনুভূতি। প্রক্রিয়াটিতে একজন প্রকৌশলী শ্রোতার কানের উপরে বা পাশে পিছনে, শব্দটিকে সরাতে সক্ষম ছিল। চলচ্চিত্রের সুর পিংক ফ্লয়েড, ১৯৬৮ সাল থেকে শুরু করে, দ্য কমিটি সহ আরও কয়েকটি চলচ্চিত্রের সুর রচনা করেছে। ১৯৬৯ সালে, তারা বারবেট শ্রোডার পরিচালিত মোর চলচ্চিত্রের সুর রেকর্ড করে। এই সাউন্ডট্র্যাকটি ব্যবসাসফল হয়েছিল; এটি শুধুমাত্র যে ভাল আয় করেছিল তাই নয়, তবে, আ সসারফুল অব সিক্রেট্‌স-এর পাশাপাশি সরাসরি পরিবেশনার জন্য তৈরি সঙ্গীত উপাদানও এতে সংযোজিত হয়েছে। পরিচালক মিকেলাঞ্জেলো আন্তোনিওনি'র জাব্রিস্কি পয়েন্ট (১৯৭০) চলচ্চিত্রের সাউন্ডট্র্যাক রচনা করার সময়, দলটি প্রায় এক মাস রোমের অভিজাত হোটেলে অবস্থান নিয়েছিল। ওয়াটার্স অভিযোগ করে বলেন, আন্তোনিওনির ক্রমাগত পরিবর্তনের প্রবণতা না থাকলে তারা এক সপ্তাহের কম সময়ে কাজ সমাপ্ত করতে পারতো। অবশেষে আন্তোনিওনি শুধুমাত্র তাদের তিনটি রেকর্ডিং ব্যবহার করেছিলেন। আন্তোনিওনির বাদ দেয়া একটি অংশ, "দ্য ভায়োলেন্ট সিকোয়েন্স", পরবর্তীতে "আস অ্যান্ড দ্যাম", শিরোনামে ১৯৭৩-এর দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন অ্যালবামে সংযোজিত হয়েছে। ১৯৭১ সালে, দলটি দ্বিতীয়বারের মত শ্রোডারের সঙ্গে লা ভ্যালি চলচ্চিত্রে কাজ করে, যার জন্য তারা অব্‌সকিওর্ড বাই ক্লাউড্‌স নামে একটি সাউন্ডট্র্যাক অ্যালবাম প্রকাশ করেছিল। তারা প্যারিসের কাছাকাছি শ্যাটো ডি'হেরুভিল অঞ্চলে প্রায় এক সপ্তাহব্যাপী সময়নাগাদ এর সঙ্গীত উপাদান গঠন করে, এবং মুক্তির পর, এটি পিংক ফ্লয়ডের প্রথম অ্যালবাম হিসাবে ইউএস বিলবোর্ড চার্টের শীর্ষ ৫০-এ আবন্থান নেয়। সরাসরি পরিবেশনা সরাসরি সঙ্গীত পরিবেশনায় পিংক ফ্লয়েড তাদের বুহুলব্যায়ী মঞ্চ প্রদর্শনীর জন্য খ্যাত, এছাড়াও শব্দ মানের ক্ষেত্রে উচ্চতর মান স্থাপন, উদ্ভাবনী শব্দ এফেক্ট এবং চতুর্ভুজ স্পিকার সিস্টেম ব্যবহারের পথিকৃৎ হিসাবে পরিচিত। দলের শুরুর দিকের সময় থেকেই লন্ডনের ইউএফও ক্লাবের মতো স্থানে পরিবেশন করার সময় তারা তাদের সাইকেডেলিক রক সঙ্গীতের সাথে ভিজ্যুয়াল এফেক্ট ব্যবহার শুরু করেছিল। তাদের স্লাইড-লাইট শো ছিল ব্রিটিশ শৈলীর অন্যতম একটি প্রদর্শনী এবং যটি লন্ডনের আন্ডারগ্রাউন্ড সঙ্গীত জগতে জনপ্রিয় হয়ে উঠতে তাদের সহায়তা করেছিল। ১৯৬৬ সালে লন্ডন ফ্রি স্কুলের ইন্টারন্যাশনাল টাইমস ম্যাগাজিনের উদ্বোধন উদযাপনের জন্য, তারা রাউন্ডহাউসে উদ্বোধনকালে তারা ২ হাজার মানুষের সামনে পরিবেশন করেছিলেন, যেখানে পল ম্যাককার্টনি এবং মারিয়ান ফেইথফুল সহ খ্যাতিমান ব্যক্তিরা উপস্থিত ছিল। ১৯৬৬ সালের মাঝামাঝি সময়ে, রোড ব্যবস্থাপক পিটার ওয়াইন-উইলসন তাদের রোড ক্রুতে যোগ দিয়েছিলেন এবং সমবর্তিত, আয়না এবং প্রসারিত কনডমের ব্যবহার সহ কিছু উদ্ভাবনী ধারণার মাধ্যমে ব্যান্ডের আলোকশৈলী উন্নততর করেছিলেন। ইএমআই-এর সাথে তাদের রেকর্ড চুক্তির পরে, পিংক ফ্লয়েড একটি ফোর্ড ট্রানজিট ভ্যান কিনেছিল, যা তখন বহির্মুখী ব্যান্ড পরিবহন হিসাবে ব্যবহৃত হতো। ১৯৬৭ সালের ২৯ এপ্রিল তারা লন্ডনের আলেকজান্দ্রা প্রাসাদে দ্য ফর্টিন আওয়ার টেকনিকালার ড্রিম নামে একটি রাতব্যাপী অনুষ্ঠানের তারা শিরোনাম হয়েছিলেন। সূর্য উঠতে শুরু করার সাথে সাথে মঞ্চে উঠার উদ্দেশ্যে নেদারল্যান্ডস থেকে ভ্যান ও ফেরিতে করে দীর্ঘ যাত্রা শেষে শেষরাত তিনটার দিকে পিংক ফ্লয়েড উৎসবে উপস্থিত হয়। ১৯৬৯ সালের জুলাইয়ে, তাদের মহাকাশ-সম্পর্কিত সঙ্গীত এবং গানের সুরের জন্য তারা অ্যাপোলো ১১ মহাকাশযানের চাঁদে অবতরণের সরাসরি বিবিসি টেলিভিশনের কভারেজে যুক্ত হয়, যেখানে তাদের ইন্সট্রুমেন্টাল "মুনহেড" ব্যবহৃত হয়েছিলো। ১৯৭৮ সালের নভেম্বরে, তারা প্রথমবারের মতো বৃহতাকার বিজ্ঞপ্তি পর্দা নিযুক্ত করেছিল যা তাদের সরাসরি অনুষ্ঠানগুলির চলাকালীন প্রদর্শিত হবে। ১৯৭৭ সালে, তারা "অ্যালজি" নামে একটি বৃহত ফাঁফানো ভাসমান শূকরের বেলুন তৈরি করে। এই হিলিয়াম ও প্রোপেন দিয়ে ভর্তি অ্যালজি ইন দ্য ফ্লেশ সফর চলাকালীন শ্রোতাদের উপরে ভেসে ওঠার সময় উচ্চ শব্দে বিস্ফোরিত হবে। সফরকালীন দর্শকদের আচরণ এবং ভেন্যুগুলির বৃহত আকার তাদের দ্য ওয়াল ধারণা অ্যালবামটিকে শক্তিশালীভাবে প্রভাবিত করেছিল। পরবর্তী দ্য ওয়াল সফরে ব্যান্ড এবং দর্শকদের মাঝে কার্ডবোর্ডের ইট থেকে নির্মিত একটি উচ্চ প্রাচীর বানানো হয়। দর্শকদের গল্পের প্রয়োজনে বিভিন্ন দৃশ্য দেখাতে তারা প্রাচীরের উপরে অ্যানিমেশন প্রদর্শন করেছিল। গল্পের চরিত্রগুলিকে উপস্থাপন করার জন্য তারা বেশ কয়েকটি ফাঁফানো দৈত্য বাানিয়েল। এই সফরের একটি আকর্ষণীয় বৈশিষ্ট্য হল "কমফোর্টেবলি নাম্ব" গানের পরিবেশনা। ওয়াটার্স তার উদ্বোধনী শ্লোক গাওয়ার সময়, অন্ধকারে, গিলমোর প্রাচীরের উপরে তার অংশ বাজানোর জন্য অপেক্ষা করেছিলেন। যখন গিলমোরের বাজানোর সময় এলো, উজ্জ্বল নীল এবং সাদা আলোগুলি হঠাৎ তাকে প্রকাশ করল। গিলমুর ক্যাসেটরগুলির একটি ফ্লাইটকেসের উপর দাঁড়িয়েছিলেন, যেটি ছিল একজন প্রযুক্তিবিদের নিয়ন্ত্রণে পিছনে থেকে বাঁধা একটি অনিরাপদ সেটআপ। একটি বৃহৎ হাইড্রোলিক প্ল্যাটফর্ম গিলমোর এবং প্রযুক্তিবিদ উভয়কেই প্রতিরক্ষা প্রদান করে। ডিভিশন বেল সফর চলাকালীন, পাব্লিয়াস নাম ব্যবহার করে অজ্ঞাতপরিচয়ধারী ব্যক্তি একটি সংবাদ গ্রুপে অনুরাগীদের নতুন এই অ্যালবামে লুকিয়ে থাকা একটি ধাঁধা সমাধান করার জন্য আমন্ত্রণ জানিয়ে একটি বার্তা পোস্ট করেন। পূর্ব রাদারফোর্ডের পিংক ফ্লয়েডের কনসার্টে মঞ্চের সামনে সাদা বাতিগুলি একসঙ্গে এনিগমা পাবলিয়াস (Enigma Publius) শব্দটির বানান। ১৯৯৪ সালের ২০ অক্টোবর আর্লস কোর্টে একটি টেলিভিশনের কনসার্ট চলাকালীন, কেউ একজ মঞ্চের পটভূমিতে বড় অক্ষরে "এনিগমা" শব্দটির অনুমান করেছিলেন। মেইসন পরবর্তীতে স্বীকার করেছেন যে তাদের রেকর্ড সংস্থাটি ব্যান্ডের চাইতে অধিক পাবলিয়াস এনিগমা রহস্যকে উদ্বুদ্ধ করেছিল। গীতধর্মী বিষয় ওয়াটার্সের দার্শনিক গীতিকবিতার আঙ্গিকে চিহ্নিত, রোলিং স্টোন পিংক ফ্লয়েডকে "স্বতন্ত্র অন্ধকার দৃষ্টির সীমারেখা" হিসাবে বর্ণনা করেছে। লেখক জেরে ও'নেইল সার্বার লিখেছেন: "তাদের আগ্রহ সত্য এবং মায়া, জীবন এবং মৃত্যু, সময় এবং মহাকাশ, কার্যকারণ এবং সুযোগ, সমবেদনা এবং উদাসীনতা।" পিংক ফ্লয়েডের গানের একটি কেন্দ্রীয় ভাব হিসাবে ওয়াটার্স সমানুভূতি শনাক্ত করেছে। লেখক জর্জ রিশ বর্ণনা করেছেন, মেডল-এর সাইকেডেলিক রচনা, "ইকোস", "সত্যিকারের যোগাযোগ, সহানুভূতি, এবং অন্যদের সাথে সহযোগিতার মূল ধারণাটির সংস্পর্শে নির্মিত।" লেখক ডিনা ওয়েইনস্টাইন, ওয়াটার্সকে একজন অস্তিত্ববাদী হিসাবে উল্লেখ করেন। মোহমুক্তি, অনুপস্থিতি এবং অনস্তিত্ব উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার-এর "হ্যাব অ্যা সিগার" গানে ওয়াটার্সের পঙ্‌ক্তিতে রয়েছে সঙ্গীত ইন্ডাস্ট্রির প্রতিনিধিদের আন্তরিকতাবোধহীনতার কথা। গানটি ব্যান্ড এবং একটি রেকর্ড লেবেল নির্বাহীর মধ্যে অকার্যকর গতিশীলতা চিত্রায়ন করেছে যারা তাদের বর্তমান বিক্রয় সাফল্যের জন্য দলটিকে অভিনন্দন জানায়, বোঝায় যে তারা একই দলে রয়েছেন এবং প্রকাশ্যে যে ভুলক্রমে বিশ্বাস করেন যে "পিংক" ব্যান্ডের অন্যতম সদস্যের নাম। লেখক ডেভিড ডেটমারের মতে, অ্যালবামের গানে "বাণিজ্য জগতের অমানবিক দিকগুলি" বিষয়ক কথাগুলি, এমন পরিস্থিতি যেখানে শ্রোতাদের কাছে পৌঁছানোর জন্য শিল্পীদের সহনশীল হতে হয়। পিংক ফ্লয়েডের স্বভাবত গীতি দর্শনের একটি হলো অনুপস্থিতি। উদাহরণস্বরূপ ১৯৬৮ সালের পরে ব্যারেটের অনুপস্থিতি এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ওয়াটার্সের নিহত পিতা। এছাড়াও ওয়াটার্সের গানে অসাধিত রাজনৈতিক লক্ষ্য এবং ব্যর্থ প্রচেষ্টার কথা পাওয়া যায়। তাদের চলচ্চিত্রের স্কোর, অব্‌সকিওর্ড বাই ক্লাউড্‌স, তারুণ্যের প্রফুল্লতা হ্রাসের কথা বলে যা কখনও কখনও বার্ধক্য বা সুপরিণতির ইঙ্গিত করে। পিংক ফ্লয়েডের অ্যালবামের প্রচ্ছদের দীর্ঘকালীন ডিজাইনার, স্টর্ম থরগের্সন, উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার গানের প্রসঙ্গে বলেছেন: এখানে "অস্তির ধারণা প্রতিসংহৃত হয়েছে, যেভাবে লোকেরা নিজেদের উপস্থিতি দেখানোর ভান করে অথচ তাদের মন সত্যিই অন্য কোথাও রয়েছে এবং তাদের উপস্থিতির পুরো শক্তিটি দমন করতে তাদের যন্ত্রাংশ এবং অনুপ্রেরণাগুলি মনস্তাত্ত্বিকভাবে প্রলিপ্ত হয়, অবশেষে ফলাফল দাঁড়াচ্ছে অনুপস্থিতি: অর্থাৎ ব্যক্তির অনুপস্থিতি, তার অনুভূতির অনুপস্থিতি।" ওয়াটার্স মন্তব্য করেছিলেন: "এটা আসলে আমাদের কেউই সেখানে না থাকার কথা... [এটা] উইশ উই ওয়্যার হেয়ার বলা উচিত ছিল"। ও'নিল সার্বার পিংক ফ্লয়েডের গানের বিশ্চেষণ করে জানিয়েছেন তাদের সঙ্গীতে অনুপস্থিতির বিষয়টি একটি বিশেষ ধারণা। ওয়াটার্স দ্য ওয়াল-এর "কমফোর্টেবলি নাম্ব" গানে অনুপস্থিতি বা অনস্তিত্বের আহ্বান জানিয়েছে: "আমি আমার চোখের কোণ থেকে একটি ক্ষণস্থায়ী আভাস পেয়েছি। আমি তাকালাম, কিন্তু তা চলে গেছে, আমি এখন এতে আমার আঙুল রাখতে পারি না, শিশুটি বড় হয়েছে, স্বপ্নটি চলে গেছে।" ব্যারেট ব্যান্ডের সাথে তার সর্বশেষ দিকের গান "জাগব্যান্ড ব্লুজ"-এ অনুপস্থিতি বিষয়টি উল্লেখ করেছেন: "আমি এখানে নই এটা পরিষ্কার করার জন্য আমি আপনার কাছে সবচেয়ে বেশি বাধ্য।" শোষণ ও নিপীড়ন লেখক প্যাট্রিক ক্রস্কারি, অ্যানিম্যাল্‌স অ্যালবামটিকে "শক্তিশালী শব্দ এবং পরামর্শমূলক ধারণার" একটি অনন্য মিশ্রণ হিসাবে দ্য ওয়াল-এর সাথে ডার্ক সাইড-এর শৈল্পিক বিচ্ছিন্নতার চিত্রায়নের বর্ণনা করেছেন। তিনি অ্যালবামের রাজনৈতিক ধারণা এবং অরওয়েলের অ্যানিম্যাল ফার্মের মধ্যে একটি সমান্তরাল সদৃশ আঁকেন। একটি চিন্তার পরীক্ষণের মধ্য দিয়ে অ্যানিম্যাল্‌স শুরু হয়, যা জিজ্ঞাসা করে: "If you didn't care what happened to me. And I didn't care for you", তারপরে প্রত্যেকের মনের স্বতন্ত্র অবস্থা প্রতিবিম্বিত করতে সঙ্গীত ব্যবহার করে অ্যানথ্রোপমর্ফাইজড চরিত্রগুলির ভিত্তিতে পশুর উপকথার বিকাশ ঘটে। গানের কথাগুলি শেষ পর্যন্ত ডাইস্টোপিয়ায় একটি চিত্র অঙ্কন করে, সমবেদনা এবং করুণাবিহীন একটি পৃথিবীর অনিবার্য পরিণতি, শুরুর পঙ্‌ক্তিতে উত্থাপিত প্রশ্নের উত্তর দিয়ে। অ্যালবামের অন্তর্ভুক্ত চরিত্রগুলিতে রয়েছে "কুকুর", যারা পুঁজিপতিদের প্রতিনিধিত্ব করে, "শূকর", যারা রাজনৈতিক দুর্নীতির প্রতীক, এবং "ভেড়া", যারা শোষিতদের প্রতিনিধিত্ব করে। ক্রস্ক্যারি "ভেড়া"-কে একটি "বিভ্রান্তিকর সাংস্কৃতিক পরিচয় দ্বারা সৃষ্ট বিভ্রমের অবস্থা" হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন, এটি একটি ভ্রান্ত চেতনা। "কুকুর", তার স্বার্থ এবং সাফল্যের অক্লান্ত সাধনায়, হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়ে এবং বিশ্বাস করার মতো কাওকে খুঁজে পায় না। শোষণের পরেও পুরোপুরি মানসিক তৃপ্তির অভাব বোধ করে। ওয়াটার্স মেরি হোয়াইটহাউসকে "শূকরের" উদাহরণ হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন; তার অনুমান অনুসারে, যারা সরকারের শক্তি প্রয়োগ করে সমাজে নিজের মূল্যবোধ চাপিয়ে দেওয়ার ভূমিকা নেয়। অ্যালবামের সমাপ্তিতে ওয়াটার্সের গীতিময় বক্তব্য সহানুভূতিতে ফিরে আসে: "You know that I care what happens to you. And I know that you care for me too."। তবে, তিনি আরও স্বীকার করেছেন যে "শূকরগুলি" একটি অব্যাহত হুমকি স্বরূপ এবং শেষে তারা দেখে যে "কুকুর" যার আশ্রয় প্রয়োজন, যে রাষ্ট্র, বাণিজ্য এবং সম্প্রদায়ের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখার পরামর্শ দিয়েছিল, তাদের মধ্যেকার চলমান যুদ্ধের বিপরীতে। বিচ্ছিন্নতা, যুদ্ধ এবং উন্মাদনা ও'নিল সার্বার দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন-এর "ব্রেইন ড্যামেজ" গানের "there's someone in my head, but it's not me" পঙ্‌ক্তির সঙ্গে কার্ল মার্কসের স্ব-বিচ্ছিন্নতা তত্ত্বের তুলনা করেছেন। উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার-এর "ওয়েলকাম টু দি মেশিন" গান মার্কসের বস্তুর বিচ্ছিন্নতার সুপারিশ করে; গানের মূল চরিত্র বস্তুগত ভাবের সঙ্গে ওতোপ্রোতোভাবে জড়িত ছিল যে, তিনি নিজেকে, নিজ এবং অন্যদের থেকে বিছিন্ন ভাবছেন। মানব প্রজাতির বিচ্ছিন্নতা সম্পর্কে জবানবন্দি পাওয়া যেতে পারে অ্যানিম্যাল্‌স অ্যালবামের মধ্যে; যেখানে "কুকুর" অ-মানব হিসাবে প্রবৃত্তিগতভাবে বসবাস হ্রাস করে। দিয়েটমার লিখেছেন, "কুকুরেরা" নিজেদের থেকে এই পরিমাণে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় যে তারা "প্রয়োজনীয় এবং প্রতিরক্ষামূলক" অবস্থান হিসাবে "সহানুভূতি বা নৈতিক নীতির কোনও জায়গা ছাড়াই একটি সাংঘাতিক (কাটথ্রোট) ভুবন" হিসাবে তাদের সত্যতার অভাবকে ন্যায্যতা দেয়। পিংক ফ্লয়েডের গানগুলির মধ্যে অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্নতা হচ্ছে একটি ধারাবাহিক ধারণা, এবং যা মূলত দ্য ওয়াল অ্যালবামের প্রধান উপাদান হিসেবে বিবেচিত। যুদ্ধ, অন্যের কাছ থেকে বিচ্ছিন্নতা প্রকাশের সবচেয়ে মারাত্মক পরিণতি হিসাবে দেখা, মূলত দ্য ওয়াল-এর মূল উপাদান এবং ব্যান্ডের সঙ্গীতের একটি পুনরাবৃত্ত থিম। ওয়াটার্সের বাবা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় যুদ্ধে মারা গিয়েছিলেন, এবং তার রচনাগুলি প্রায়শই যুদ্ধের ব্যয়কে নির্দেশ করে, যার মধ্যে "কর্পোরাল ক্লেগ" (১৯৬৮), "ফ্রি ফোর" (১৯৭২), "আস অ্যান্ড দেম" (১৯৭৩), "হোয়েন দ্য টাইগার্স ব্রোক ফ্রি" এবং দ্য ফাইনাল কাট (১৯৮৩) থেকে "দ্য ফ্লেচার মেমোরিয়াল হোম", যে অ্যালবামটি তিনি তার বাবাকে উৎসর্গ করেছেন এবং শিরোনামে লিখেছেন অ্যা রেকুয়েম ফর দ্য পোস্টওয়ার ড্রিম। দ্য ওয়াল-এর থিম এবং রচনায় প্রকাশ পায় দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ইংরেজ সমাজে পুরুষদের বিচ্ছিন্নতাবস্থায় ওয়াটার্সের বেড়ে ওঠা, এবং এমন একটি অবস্থা যা নারীদের সাথে তার ব্যক্তিগত সম্পর্কের উপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছিল। দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন-এ ওয়াটার্সের লিরিক আধুনিক জীবনের চাপগুলির সাথে মোকাবিলা করেছিল এবং কীভাবে সেই চাপগুলি মাঝে মধ্যে উন্মাদনার কারণ হতে পারে। তিনি অ্যালবামটির মানসিক অসুস্থতার বহিঃপ্রকাশকে সর্বজনীন অবস্থা আলোকিত হিসাবে দেখেন। তবে, ওয়াটার্স চেয়েছিলেন অ্যালবামটির ইতিবাচকতা জানাতে, "এর ইতিবাচকতা আলিঙ্গন এবং নেতিবাচকতা প্রত্যাখ্যান করার" আহবান করেন। রিশ "দ্য ওয়াল"-কে "অভ্যাস, প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক কাঠামো যা পাগলামি তৈরি করে বা সৃষ্টি করে তার চেয়ে উন্মাদ অভিজ্ঞতা সম্পর্কে অপেক্ষাকৃত কম বলে বর্ণনা করেছেন। দ্য ওয়াল-এর নায়ক, পিংক, তার জীবনের পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে অক্ষম, এবং অপরাধবোধের দ্বারা কাটিয়ে উঠা, ধীরে ধীরে নিজের তৈরি বাধার ভিতরে নিজেকে বাইরের জগত থেকে আবন্ধ করে তোলে। পৃথিবী থেকে তার বিচরণ সম্পন্ন করার পরে, পিংক বুঝতে পারে যে তিনি "উন্মাদ, রংধনুর ওপরে (crazy, over the rainbow)"। তারপরে তিনি (পিংক) এই সম্ভাবনাটি বিবেচনা করেন যে তার এই অবস্থা তার নিজের দোষে হতে পারে: "আমি কি এতক্ষণ অপরাধবোধে ছিলাম? (have I been guilty all this time?)" তার সবচেয়ে বড় ভয় বুঝতে পেরে, পিংক বিশ্বাস করেন যে তিনি সবাইকে হতাশ করেছেন, তার কর্তৃত্বপ্রয়াসী মা বুদ্ধি করে তাকে হতাশার উপায় বেছে নিয়েছে, শিক্ষকরা তার কাব্যিক আকাঙ্ক্ষার যথাযথভাবে সমালোচনা করেছেন এবং তার স্ত্রী তাকে ছেড়ে চলে যাওয়াকে ন্যায়সঙ্গত করেছেন। তারপরে তিনি "প্রায় মানুষের প্রকৃত অনুভূতি দেখানোর" জন্য বিচারের মুখোমুখি হন, আরও প্রজাতির সত্তার বিচ্ছিন্নতা বাড়িয়ে তোলেন। রিশের মতে, রিচার মত দার্শনিক মিশেল ফুকোর রচনার মতো, ওয়াটার্সের গানে বোঝা যায় যে পিংক-এর উন্মাদনা আধুনিক জীবনের একটি পণ্য, যার উপাদানগুলি, "পছন্দসই, সহনির্ভরতা এবং সাইকোপ্যাথোলজি", যা তার ক্রোধের সুষ্টি করে। স্বীকৃতি ও প্রভাব পিংক ফ্লয়েড সর্বকালের সর্বাধিক বাণিজ্যিকভাবে সফল এবং প্রভাবশালী রক ব্যান্ডগুলির একটি। বিশ্বব্যাপী তাদের প্রায় ২৫০ মিলিয়নের অধিক রেকর্ডের বিক্রি হয়েছে, যার মধ্যে ৭৫ মিলিয়ন প্রত্যায়িত একক কেবল যুক্তরাষ্ট্রে। ১৯৯৩ সাল পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রে তাদের ৩৭.৯ মিলিয়ন অ্যালবাম বিক্রি হয়েছে। সানডে টাইমস ধনী তালিকা, সঙ্গীত মিলিয়নিয়ার ২০১৩ (ইউকে), তালিকায় রজার ওয়াটার্সকে আনুমানিক £১৫০ মিলিয়নের (১৫ কোটি) হিসেবে ১২তম, ডেভিড গিলমোরকে £৮৫ মিলিয়নের (৮.৫ কোটি) হিসেবে ২৭তম, এবং নিক মেইসনকে £৫০ মিলিয়নের (৫ কোটি) হিসেবে ৩৭তম স্থানে অর্ন্তভুক্ত করেছে। ২০০৪ সালে, এমএসএনবিসি তাদের "দ্য টেন বেস্ট রক ব্যান্ডস এভার" তালিকায় পিংক ফ্লয়েডকে ৮তম স্থানে অন্তর্ভুক্ত করেছে। রোলিং স্টোন তাদের "দ্য হান্ড্রেড গ্রেটেস্ট আর্টিস্ট অব অল টাইম" তালিকায় ৫১তম স্থানে অন্তর্ভুক্ত করেছে। কিউ তাদের সংকলনে সর্বকালের বৃহত্তম ব্যান্ড হিসেবে পিংক ফ্লয়েডের নাম উল্লেখ করেছে। ভিএইচওয়ান "হান্ড্রেড গ্রেটেস্ট আর্টিস্ট অব অল টাইম" তালিকায় তাদের ১৮তম স্থানে অন্তর্ভুক্ত করেছে। কলিন লারকিন তার 'টপ ফিফ্টি আর্টিস্ট অব অল টাইম' তালিকায় পিংক ফ্লয়েডকে ৩য় স্থানে অন্তর্ভুক্ত করেছে, এটি তার অল টাইম টপ হান্ড্রেড অ্যালবাম্‌স তালিকায় প্রতিটি শিল্পীর অ্যালবামের জন্য সংযোজনী ভোটের মাধ্যমে অন্তর্ভুক্ত। পিংক ফ্লয়েড বিভিন্ন পুরস্কার জিতেছে। ১৯৮১ সালে অডিও প্রকৌশলী জেমস গাথরি দ্য ওয়াল গানের জন্য "শ্রেষ্ঠ প্রকৌশলী নন-ক্লাসিক্যাল অ্যালবাম" বিভাগে গ্র্যামি অ্যাওয়ার্ড লাভ করেন, এবং ১৯৮৩ সালে রজার ওয়াটার্স দ্য ওয়াল চলচ্চিত্রের "অ্যানাদার ব্রিক ইন দ্য ওয়াল" গানের জন্য "চলচ্চিত্রের জন্য রচিত শ্রেষ্ঠ মূল গান" বিভাগে ব্রিটিশ একাডেমি অব ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন আর্টস পুরস্কার লাভ করেন। ১৯৯৫ সালে, পিংক ফ্লয়েড "মরুন্ড" গানের জন্য শ্রেষ্ঠ রক যন্ত্রসঙ্গীত পরিবেশনা বিভাগে গ্র্যামি পুরস্কার লাভ করে। ২০০৮ সালে, সুইডেনের রাজা কার্ল ষোড়শ গুস্তাফ আধুনিক সঙ্গীতে তাদের অবদানের স্বীকৃতি স্বরূপ পিংক ফ্লয়েডকে পোলার মিউজিক প্রাইজ প্রদান করেন; ওয়াটার্স এবং মেইসন অনুষ্ঠানে যোগদান পূর্বক পুরস্কার গ্রহণ করেন। পিংক ফ্লয়েড ১৯৯৬ সালে রক অ্যান্ড রোল হল অব ফেম, ২০০৫ সালে ইউকে মিউজিক হল অব ফেমের, এবং ২০১০ সালে হিট পারাডে হল অব ফেম-এর অন্তর্ভুক্ত হয়। পিংক ফ্লয়েডের সঙ্গীত বহু শিল্পীদের প্রভাবিত করেছে; ডেভিড বোয়ি একটি উল্লেখযোগ্য অনুপ্রেরণার জন্য ব্যারেটর নাম উল্লেখ করেছেন, এবং ইউটু ব্যান্ডের দ্য এজ মূলত অ্যানিম্যাল্‌স-এর "ডগ্‌স" গানের শুরুর গিটার কর্ড শোনার পর প্রথম ডিলে প্যাডেলে ক্রয় করেছিলেন। অন্যান্যদের ব্যান্ড যারা তাদের উদ্ধৃত প্রভাবের হিসাবে পিংক ফ্লয়েডের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে, যার মধ্যে কুইন, টুল, রেডিওহেড, ক্রাফ্টরেক, ম্যারিলিয়ন, Queensrÿche, নাইন ইঞ্চ নেইলস, দ্য অর্ব এবং দ্য স্মাশিং পাম্পিনস অর্ন্তভূক্ত। পিংক ফ্লয়েড নব্য-প্রোগ্রেসিভ রক উপশাখার ওপর প্রভাব বিস্তার করেছে যা ১৯৮০-এর দশকে আবির্ভূত হয়েছিল। ইংরেজ রক ব্যান্ড মোস্টলি অটাম তাদের শব্দে "জেনেসিস এবং পিংক ফ্লয়েডের সঙ্গীত একীভূত করেছে"। পিংক ফ্লয়েড এছাড়াও মন্টি পাইথন কমেডি দলের প্রশংসাকারী ছিল। ফ্লয়েড তাদের ১৯৭৫ সালের মন্টি পাইথন অ্যান্ড দ্য হিল গ্রিল চলচ্চিত্রে অর্থ প্রদানের মাধ্যমে সাহায্য করেছিল। ২০১৬ সালে, ব্যান্ডটির প্রধান একটি কাজ লন্ডনে ভিক্টোরিয়া ও অ্যালবার্ট জাদুঘরে অন্তর্ভূক্তির ঘোষণা দেওয়া হয়, পরবর্তী বছর দলটির প্রথম একক প্রকাশের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষ্যে। মে ২০১৭ সালে, অডিও-ভিজুয়াল প্রদর্শনী, দেয়ার মর্টাল রিমেইন্স, অ্যালবাম প্রচ্ছদ শিল্প বিশ্লেষণ, মঞ্চ শো এবং নিক মেইসনের ব্যক্তিগত সংরক্ষণ থেকে আলোকচিত্রশিল্পের ধারণাগত প্রতিরূপের বৈশিষ্টায়িত করা হয়েছিল; এর জনপ্রিয়তার কারণে, এটি ১ অক্টোবরে বন্ধের তারিখ অতিক্রমের পর দুই সপ্তাহের জন্য বৃদ্ধি করা হয়েছিল। ডিস্কোগ্রাফি স্টুডিও অ্যালবাম দ্য পাইপার অ্যাট দ্য গেট্‌স অব ডউন (১৯৬৭) আ সসারফুল অব সিক্রেট্‌স (১৯৬৮) মোর (১৯৬৯) উমাগুমা (১৯৬৯) অ্যাটম হার্ট মাদার (১৯৭০) মেডল (১৯৭১) অব্‌সকিওর্ড বাই ক্লাউড্‌স (১৯৭২) দ্য ডার্ক সাইড অব দ্য মুন (১৯৭৩) উইশ ইউ ওয়্যার হেয়ার (১৯৭৫) অ্যানিম্যাল্‌স (১৯৭৭) দ্য ওয়াল (১৯৭৯) দ্য ফাইনাল কাট (১৯৮৩) অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন (১৯৮৭) দ্য ডিভিশন বেল (১৯৯৪) দি এন্ডলেস রিভার (২০১৪) কনসার্ট সফর পিংক ফ্লয়েড বিশ্ব সফর (১৯৬৮) দ্য ম্যান অ্যান্ড দ্য জার্নি সফর (১৯৬৬) অ্যাটম হার্ট মাদার বিশ্ব সফর (১৯৭০) মেডল ট্যুর (১৯৭১) ডার্ক সাইড অব দ্য মুন (১৯৭২–৭৩) ১৯৭৪ (১৯৭৪) উইস ইউ ওয়্যার হেয়ার সফর (১৯৭৫) ইন দ্য ফ্লেশ (১৯৭৭) দ্য ওয়াল সফর (১৯৮০–৮১) অ্যা মৌমানট্রি ল্যাপ্‌স অব রিজন সফর (১৯৮৭–৯০) দ্য ডিভিশন বেল সফর (১৯৯৪) টিকা তথ্যসূত্র উৎস আরও পড়ুনবইসমূহ' তথ্যচিত্রসমূহ বহিঃসংযোগ ১৯৬৫-এ প্রতিষ্ঠিত সঙ্গীত দল ১৯৬৫-এ যুক্তরাজ্যে প্রতিষ্ঠিত ১৯৯৫-এ বিলুপ্ত সঙ্গীত দল ১৯৯৫-এ যুক্তরাজ্যে বিলুপ্ত ১৯৬০-এর দশকের প্রতিসংস্কৃতি রক সঙ্গীত জোড় সাইকেডেলিক পপ সঙ্গীত দল ইংরেজ আর্ট রক দল ইংরেজ প্রোগ্রেসিভ রক দল ইংরেজ সাইকেডেলিক রক সঙ্গীত দল ইংরেজ স্পেস রক সঙ্গীত দল ইংরেজ পরীক্ষামূলক রক দল ব্রিটিশ রিদম অ্যান্ড ব্লুজ বুম সঙ্গীতজ্ঞ লন্ডনের সঙ্গীত দল কলাম্বিয়া রেকর্ডসের শিল্পী হার্ভেস্ট রেকর্ডসের শিল্পী ক্যাপিটল রেকর্ডসের শিল্পী পার্লোফোনের শিল্পী প্রোটো-প্রোগ সঙ্গীতজ্ঞ গ্র্যামি পুরস্কার বিজয়ী ইকো সঙ্গীত পুরস্কার বিজয়ী বছরের শ্রেষ্ঠ আন্তর্জাতিক অ্যালবামের জন্য জুনো পুরস্কার বিজয়ী সিড ব্যারেট রজার ওয়াটার্স রিচার্ড রাইট (সঙ্গীতজ্ঞ) ডেভিড গিলমোর নিক মেইসন ওপেনকর্পোরেটসের জোট
https://en.wikipedia.org/wiki/Pink_Floyd
Pink Floyd
Pink Floyd are an English rock band formed in London in 1965. Gaining an early following as one of the first British psychedelic groups, they were distinguished by their extended compositions, sonic experiments, philosophical lyrics, and elaborate live shows. They became a leading band of the progressive rock genre, cited by some as the greatest progressive rock band of all time. Pink Floyd were founded in 1965 by Syd Barrett (guitar, lead vocals), Nick Mason (drums), Roger Waters (bass guitar, vocals) and Richard Wright (keyboards, vocals). With Barrett as their main songwriter, they released two hit singles, "Arnold Layne" and "See Emily Play", and the successful debut album The Piper at the Gates of Dawn (all 1967). David Gilmour (guitar, vocals) joined in 1967; Barrett left in 1968 due to deteriorating mental health. While all four members contributed compositions, Waters became the primary lyricist and thematic leader, devising the concepts behind Pink Floyd's most successful albums, The Dark Side of the Moon (1973), Wish You Were Here (1975), Animals (1977) and The Wall (1979). The musical film based on The Wall, Pink Floyd – The Wall (1982), won two BAFTA Awards. Pink Floyd also composed several film scores. Following personal tensions, Wright left Pink Floyd in 1981, followed by Waters in 1985. Gilmour and Mason continued as Pink Floyd, rejoined later by Wright. They produced the albums A Momentary Lapse of Reason (1987) and The Division Bell (1994), backed by major tours, before entering a long hiatus. In 2005, all but Barrett reunited for a performance at the global awareness event Live 8. Barrett died in 2006 and Wright in 2008. The last Pink Floyd studio album, The Endless River (2014), was based on unreleased material from the Division Bell recording sessions. In 2022, Gilmour and Mason reformed Pink Floyd to release the song "Hey, Hey, Rise Up!" in protest of the Russian invasion of Ukraine. By 2013, Pink Floyd had sold more than 250 million records worldwide, making them one of the best-selling music artists of all time. The Dark Side of the Moon and The Wall were inducted into the Grammy Hall of Fame, and these albums and Wish You Were Here are among the best-selling albums of all time. Four Pink Floyd albums topped the US Billboard 200 and five topped the UK Albums Chart. Their hit singles include "Arnold Layne" (1967), "See Emily Play" (1967), "Money" (1973), "Another Brick in the Wall, Part 2" (1979), "Not Now John" (1983), "On the Turning Away" (1987) and "High Hopes" (1994). Pink Floyd were inducted into the US Rock and Roll Hall of Fame in 1996 and the UK Music Hall of Fame in 2005. In 2008, they were awarded the Polar Music Prize in Sweden for their contribution to modern music.
1221
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%99%E0%A7%8D%E0%A6%97%E0%A7%80%E0%A6%A4
সঙ্গীত
সঙ্গীত দ্বারা গীত, বাদ্য, নৃত্য এই তিনটি বিষয়ের সমাবেশকে উল্লেখ করা হয়। গীত এক ধরনের শ্রবণযোগ্য কলা যা সুসংবদ্ধ শব্দ ও নৈশব্দের সমন্বয়ে মানব চিত্তে বিনোদন সৃষ্টি করতে সক্ষম। স্বর ও ধ্বনির সমন্বয়ে গীতের সৃষ্টি। এই ধ্বনি হতে পারে মানুষের কণ্ঠ নিঃসৃত ধ্বনি, হতে পারে যন্ত্রোৎপাদিত শব্দ অথবা উভয়ের সংমিশ্রণ। কিন্তু সকল ক্ষেত্রে সুর ধ্বনির প্রধান বাহন। সুর ছাড়াও অন্য যে অনুষঙ্গ সঙ্গীতের নিয়ামক তা হলো তাল। অর্থযুক্ত কথা, সুর ও তালের সমন্বয়ে গীত প্রকাশিত হয়। সুর ও তালের মিলিত ভাব এ বাদ্য প্রকাশিত হয়। ছন্দের সাথে দেহ ভঙ্গিমার সাহায্যে নৃত্য গঠিত । ইতিহাস পাথরযুগের মানুষও সঙ্গীত গাইতো। সম্ভবত প্রথম সঙ্গীত তৈরির চেষ্টা হয়েছিল শব্দ ও ছন্দ দ্বারা প্রকৃতির সাহায্যে। সঙ্গীতের প্রকারভেদ প্রাচ্য সঙ্গীত ও পাশ্চাত্য সঙ্গীত যান্ত্র সঙ্গীত ও কণ্ঠসঙ্গীত শাস্ত্রীয় সঙ্গীত, লোক সঙ্গীত ও আধুনিক সঙ্গীত ধ্রুপদ, খেয়াল, ঠুংরী, টপ্পা, গজল, কাওয়ালী, কালোয়াতী সঙ্গীতের স্বরলিপি সঙ্গীত বা সুর বা স্বর এর প্রকাশ পদ্ধতিতে সাত (৭) টি চিহ্ন ( সংকেত ) ব্যবহৃত হয়, যথা : সা রে গা মা পা ধা নি এই সাতটি চিহ্ন দ্বারা সাতটি কম্পাংক নির্দেশ করা হয় । এছাড়াও আরও ৫টি স্বর রয়েছে ; যাদেরকে বিকৃত স্বর বলা হয় । যথা : ঋ জ্ঞ হ্ম দ ণ সঙ্গীতের তাল সঙ্গীত সর্বাঙ্গীণ সুন্দর হয় তখনই, যখন তাল, মাত্রা, লয় সহকারে নির্দিষ্ট প্রণালীতে সম্পন্ন হয়। বলা হয়ে থাকে বেসুরো সঙ্গীত তবুও শ্রবনযোগ্য, তবে তাল-হীন গান সহ্য করা সম্ভব নয়। তাল হল সঙ্গীতের কঙ্কাল স্বরুপ। বিভিন্ন রকম তাল এর নাম ও মাত্রাঃ দাদরা : ৬ মাত্রা কাহারবা : ৮ মাত্রা তেওড়া : ৭ মাত্রা রুপক : ৭ মাত্রা ঝাঁপতাল : ১০ মাত্রা ত্রিতাল : ১৬ মাত্রা যন্ত্র সঙ্গীত বিভিন্ন প্রকার যান্ত্রীয় সঙ্গীত: তত: তার (তন্ত্রী)বিশিষ্ট, সুষির: বায়ু চালিত, ঘাতবাদ্য ঘন (বাদ্য) আনদ্ধ সঙ্গীত শিল্পের বাণিজ্যিক প্রসার প্রাচীনকাল থেকে এ বঙ্গঅঞ্চলে কীর্তন বা ঈশ্বরের নামে গান করার প্রচলন চলে আসছে। চর্যাগীতির পরে বাংলা সঙ্গীতে উল্লেখযোগ্য হয়ে আছে নাথগীতি। যদিও সঙ্গীতকে ঘিরে বিশ্বব্যাপী সৃষ্ট হয়েছে এক ধরনের ব্যবসার। এতে সঙ্গীত রচনা করে গ্রাহক কিংবা প্রচার মাধ্যমে বিক্রয়ের ব্যবস্থা করা হয়। এর সাথে জড়িত রয়েছে বিভিন্ন রেকর্ড কোম্পানী, ব্রান্ড এবং ট্রেডমার্ক সহযোগে লেবেল এবং বিক্রেতা। ২০০০ সালের পর থেকে গানের শ্রোতার সংখ্যা অসম্ভব আকারে বৃদ্ধি পেয়েছ। শ্রোতারা ডিজিটাল মিউজিক ফাইলগুলোকে এমপি-থ্রী প্লেয়ার, আইপড, কম্পিউটার এবং অন্যান্য বহনযোগ্য আধুনিক যন্ত্রে সংরক্ষণ করছেন। গানগুলো ইন্টারনেট থেকে বিনামূল্যে কিংবা ক্রয় করে সংগ্রহ করা যায়। ডিজিটাল মাধ্যমে গান সংগ্রহ ও দেয়া-নেয়ার মাধ্যমে বর্তমান সঙ্গীত শিল্প প্রসারিত হয়েছে। তবে ইন্টারনেট থেকে অবাধে বিনামূল্যে গান ডাউনলোড করার ফলে গানের সিডি বিক্রয়ের ব্যবসায় এক ধরনের হুমকির মুখে রয়েছে। এর ফলে বাণিজ্যিক শিল্পীরা আর্থিকভাবে লাভবান হতে পারছেন না। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ শিল্পকলা সঙ্গীত মূল বিষয়ের নিবন্ধ পরিবেশন শিল্পকলা শব্দ (ধ্বনি)
https://en.wikipedia.org/wiki/Music
Music
Music is the arrangement of sound to create some combination of form, harmony, melody, rhythm, or otherwise expressive content. Music is generally agreed to be a cultural universal that is present in all human societies. Definitions of music vary widely in substance and approach. While scholars agree that music is defined by a small number of specific elements, there is no consensus as to what these necessary elements are. Music is often characterized as a highly versatile medium for expressing human creativity. Diverse activities are involved in the creation of music, and are often divided into categories of composition, improvisation, and performance. Music may be performed using a wide variety of musical instruments, including the human voice. It can also be composed, sequenced, or otherwise produced to be indirectly played mechanically or electronically, such as via a music box, barrel organ, or digital audio workstation software on a computer. Music often plays a key role in social events and religious ceremony. The techniques of making music are often transmitted from as part of a cultural tradition. Music is played in public and private contexts, highlighted at events such as festivals and concerts for various different types of ensembles. Music is used in the production of other media, such as in soundtracks to films, TV shows, operas, and video games. Listening to music is a common means of entertainment. The culture surrounding music extends into areas of academic study, journalism, philosophy, psychology, and therapy. The music industry includes songwriters, performers, sound engineers, producers, tour organizers, distributors of instruments, accessories, and publishers of sheet music and recordings. Technology facilitating the recording and reproduction of music has historically included sheet music, microphones, phonographs, and tape machines, with playback of digital musics being a common use for MP3 players, CD players, and smartphones.
1222
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%95%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF
সংস্কৃতি
সংস্কৃতি (বা কৃষ্টি) হলো সেই জটিল সামগ্রিকতা যাতে অন্তর্গত আছে জ্ঞান, বিশ্বাস, নৈতিকতা, শিল্প, আইন, রাজনীতি, আচার এবং সমাজের একজন সদস্য হিসেবে মানুষের দ্বারা অর্জিত অন্য যেকোনো সম্ভাব্য সামর্থ্য বা অভ্যাস।ওয়ারউইক বিশ্ববিদ্যালয়ের ফলিত ভাষাতত্ত্বের অধ্যাপিকা হেলেন স্পেনসার-ওটেইয়ের মতে, সংস্কৃতি হলো কিছু বুনিয়াদি অনুমান, মূল্যবোধ ও জীবনের প্রতি দৃষ্টিভঙ্গির, বিশ্বাস, নীতিমালা, প্রক্রিয়া এবং আচরণিক প্রথার অস্পষ্ট সমষ্টি–যা এক দল মানুষ ভাগ করে নেয় এবং সেই সমষ্টি দলের প্রত্যেক সদস্যের আচরণকে এবং তার নিকট অন্য সদস্যের আচরণের 'অর্থ' বা সংজ্ঞায়নকে প্রভাবিত করে (কিন্তু নির্ধারিত করে না)। সংস্কৃতি শব্দটির আভিধানিক অর্থ চিৎপ্রকর্ষ বা মানবীয় বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষ সাধন। ইংরেজি Culture-এর প্রতিশব্দ হিসেবে সংস্কৃতি শব্দটি ১৯২২ সালে বাংলায় প্রথম ব্যবহার শুরু হয়। সংস্কৃতি শব্দটা এসেছে মারাঠি ভাষা থেকে। সুনীতিকুমার চট্টোপাধ্যায় বাংলায় কালচার অর্থে সংস্কৃতি শব্দটা প্রস্তাব করলে রবীন্দ্রনাথ এর অনুমোদন দেন। এর আগে বাংলায় কৃষ্টি শব্দটি চালু ছিলো কালচার অর্থে। রবীন্দ্রনাথ কৃষ্টি শব্দটা মনে করতেন, কৃষির সঙ্গে সম্পর্কিত, সুতরাং কালচার অর্থে সংস্কৃতিই উপযুক্ত। শব্দতত্ত্ব সংস্কৃতি শব্দটির আভিধানিক অর্থ চিৎপ্রকর্ষ বা মানবীয় বৈশিষ্ট্যের উৎকর্ষ সাধন। ইংরেজি Culture-এর প্রতিশব্দ হিসেবে সংস্কৃতি শব্দটি ১৯২২ সালে বাংলায় প্রথম ব্যবহার করা শুরু হয়। বর্ণনা সংস্কৃতিকে নৃবিজ্ঞানের একটি প্রধান ধারণা হিসেবে বিবেচনা করা হয়, যেসব ঘটমান বিষয় একে ঘিরে আছে তা সামাজিক শিক্ষার মাধ্যমে মানুষের সমাজে প্রবাহিত হয়। সংস্কৃতির সার্বজনীন উপাদান সকল মানব সমাজে দেখা যায়; এর মধ্যে সুস্পষ্টভাবে প্রকাশিত রূপ যেমন: শিল্প, সঙ্গীত, নৃত্য, অনুষ্ঠান, ধর্ম এবং প্রযুক্তি যেমন: যন্ত্রপাতির ব্যবহার, রান্না করা, ঘর, বাড়ি এবং কাপড় চোপড়। বস্তুগত সংস্কৃতি এর মধ্যে সংস্কৃতির কায়িক বা ভৌত রূপ রয়েছে যেমন: প্রযুক্তি, স্থাপত্য ও শিল্প রয়েছে অপর পক্ষে অবস্তুগত দিক থেকে সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর নিয়ম নীতি (রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠান এবং সামাজিক প্রতিষ্ঠানগুলোর অনুশীলন রয়েছে), পুরাণ, দর্শন, সাহিত্য, (লিখিত এবং মৌখিক), এবং বিজ্ঞান নিয়ে একটি সমাজের অধরা সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য গঠিত হয়। মানবিক বিষয়গুলোর ক্ষেত্রে সংস্কৃতির একটি মানে হলো কোন একক ব্যক্তির শিল্প, বিজ্ঞান, শিক্ষা, ভদ্রতায় নির্দিষ্ট মাত্রায় সূক্ষতা অর্জন। সাংস্কৃতিক সূক্ষতার মাত্রা কখনো কখনো সভ্যতাগুলো থেকে কম জটিল সমাজগুলোকে পার্থক্য করার জন্য ব্যবহৃত হয়ে থাকে। সংস্কৃতির ক্ষেত্রে এই উঁচু নিচু ক্রমানুসারে সমাজ সাজানোর বিষয়টি সাংস্কৃতিক পুঁজিতে কার কতোটুকু অধিকার আছে তার ভিত্তিতে অভিজাতদের জন্য উঁচু সংস্কৃতি এবং নিচু শ্রেণীর জন্য নিচু সংস্কৃতি, জনপ্রিয় সংস্কৃতি, বা লোক সংস্কৃতি এই শ্রেণী ভিত্তিক পার্থক্যে খুঁজে পাওয়া যায়। গণ সংস্কৃতি বিংশ শতাব্দীতে গণের দ্বারা উৎপাদিত ভোগবাদী সংস্কৃতি’র গণমাধ্যমে প্রচারিত রূপকে নির্দেশ করে। কিছু দর্শন যেমন: মার্ক্সীয় দর্শন বা ক্রিটিক্যাল থিউরি যুক্তি দিয়ে প্রমাণ করার চেষ্টা করে যে সংস্কৃতি কখনো কখনো নিচু শ্রেণীর লোকদের কাজে লাগানোর জন্য বা মিথ্যা সচেতনতা তৈরির জন্য অভিজাতদের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়। কালচারাল স্টাডিজ এ এ ধরনের দৃষ্টিকোন দেখতে পাওয়া যায়। বিস্তৃত সামাজিক বিজ্ঞান এ তাত্ত্বিক সামাজিক বস্তুবাদের দৃষ্টিকোন থেকে মানুষের জীবনের বস্তুগত অবস্থান থেকে মানুষের প্রতিকায়িত সংস্কৃতি উদ্ভূত হয় কারণ মানুষ তার শরীরগত অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখার জন্য এই অবস্থার তৈরি করেছে, এবং মানুষের বিবর্তনের স্বভাব দ্বারা সংস্কৃতির ভিত্তি পাওয়া যায়। যখন সংস্কৃতিকে গণনার যোগ্য সংখ্যা হিসেবে দেখা হয় তখন সংস্কৃতি মানে হচ্ছে প্রথা, ঐতিহ্য, সমাজ বা সম্প্রদায় যেমন একটি নৃগোষ্ঠিগত দল বা জাতির মূল্যবোধ। বিভিন্ন সময়ে যে জ্ঞান আহৃত হয় তার সমষ্টিই সংস্কৃতি। এই ধারণায় বহুসংস্কৃতিবাদ শান্তিপূর্ণ সহ অবস্থান এবং একই গ্রহে বসবাসরত বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধকে মূল্যায়ন করে। কখনো কখনো একটি দেশের উপদলের নির্দিষ্ট অনুশীলনকে “সংস্কৃতি” বলা হয়, উদাহরণস্বরূপ: ব্রো কালচার বা মূলধারা বিরোধী সংস্কৃতি। সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান এ কোন মানুষের সংস্কৃতি তার বিশ্বাস, মূল্যবোধ এবং অনুশীলন তার নিজের সংস্কৃতির ভিত্তিতে করা হয় এ ধারায় সংস্কৃতি সহজে নিরপেক্ষভাবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয় না বা মূল্যায়ন করা হয় না কারণ যেকোন মূল্যায়ন ওই সংস্কৃতির মূল্যবোধের উপর ভিত্তি করে স্থাপিত হয়। সংজ্ঞায়ন কোন স্থানের মানুষের আচার-ব্যবহার, জীবিকার উপায়, সঙ্গীত, নৃত্য, সাহিত্য, নাট্যশালা, সামাজিক সম্পর্ক, ধর্মীয় রীতি-নীতি, শিক্ষা-দীক্ষা ইত্যাদির মাধ্যমে যে অভিব্যক্তি প্রকাশ করা হয়, তাই সংস্কৃতি। উক্ত বিষয়গুলোকে আবার দু’ভাগে ভাগ করা যায়। প্রথমভাগ নিত্যদিনকার জীবনযাপনের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। আর দ্বিতীয়ভাগ জীবন উপভোগের ব্যবস্থা এবং উপকরণের সাথে সম্পকির্ত। সংস্কৃতি হল, টিকে থাকার কৌশল এবং পৃথিবীতে মানুষই একমাত্র সংস্কৃতিবান প্রাণী। মানুষের এই কৌশলগুলো ভৌগোলিক, সামাজিক, জৈবিকসহ নানা বৈশিষ্ট্যের উপর নির্ভর করে। পূর্বপুরুষদের যেমন এই কৌশলগুলো ছিল তা থেকে উত্তরপুরুষেরা এই কৌশলগুলো পেয়ে থাকে। অধিকন্তু সময় ও যুগের প্রেক্ষিতেও তারা কিছু কৌশল সৃষ্টি করে থাকে। তাই বলা যায়, সংস্কৃতি একদিকে যেমন আরোপিত অর্থাৎ উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত তেমনি তা অর্জিতও বটে। নৃবিজ্ঞানী টেইলরের ভাষ্যমতে, ম্যালিনোস্কির বক্তব্যমতে, স্যামুয়েল পুফেনডর্ফের সংজ্ঞা অনুযায়ী, ব্যুৎপত্তি প্রাচীন রোমের বাগ্মী সিসেরো তার তুসকালেনে ডিসপুটেশনস (Tusculanae Disputationes) নামক গ্রন্থে প্রথম আধুনিক “সংস্কৃতি” ("culture") শব্দটি ব্যবহার করেন, আত্মার চর্চা’র কথার কথা লিখেন, সেখানে তিনি একটি দার্শনিক আত্মার উন্নয়নে কৃষিভিত্তিক রূপক ব্যবহার করেন, যেখানে পরমকারণবাদের দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে আত্মার চর্চা মানুষের উন্নয়নের সর্বোচ্চ সম্ভাব্য আদর্শ। স্যামুয়েল পুফেনডর্ফ এই রূপকটিকে একই ধরনের অর্থ করে আধুনিক প্রেক্ষাপটে ব্যবহার করেছেন কিন্তু কখনোই এটি মানুষের সম্পূর্ণতার দর্শন বলে ধারণা করেন নি। তার ব্যবহার, এবং তার পরে বহু লেখক “মানুষ কীভাবে উৎসগত বর্বরতা কাটিয়ে ওঠে , আর কীভাবে দক্ষতার মাধ্যমে পুরোপুরি মানুষ হয়ে ওঠে তা নির্দেশ করেন“[৮] ১৯৮৬ সালে দার্শনিক এডওয়ার্ড এস. ক্যাসে লেখেন, “ আদতে সংস্কৃতি শব্দটির মানে মিডেল ইংলিশে হচ্ছে “জমি চাষ করা, লাতিনে এই শব্দটি হচ্ছে কোলে(colere) ‘বাস করা, যত্ন করা, চাষ করা, প্রাথনা করা’ এবং ধর্মীয় বিশ্বাস ও রীতি নীতি, ‘কোন বিশ্বাস বিশেষ করে ধর্মীয় বিশ্বাস’ সাংস্কৃতিক হওয়া মানে হচ্ছে, একটি সংস্কৃতি থাকা, প্রগাঢ়তা নিয়ে কোন স্থানে বাস করে সে যায়গাটিকে চাষাবাদ করা-যায়গাটির দায়িত্বে থাকা, সেটিতে সাড়া দেওয়া, যত্ন সহকারে জমিটিতে যোগ দেওয়া।”[৯] রিচার্ড ভেল্কলে (Richard Velkley) সংস্কৃতিকে নিম্নোক্তভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন:[৮] ...সত্যিকারের মানে হচ্ছে আত্মা বা মনের কর্ষণ, ১৮-শতকের জার্মান চিন্তাবিদদের লেখার অধিকাংশ পরবর্তী আধুনিক অর্থ গ্রহণ করে যারা (জার্মান চিন্তাবিদ) যারা “আধুনিক উদারনীতিবাদ এবং দীপনবাদ” নিয়ে করা রুশো’র সমালোচনাকে বিভিন্ন মাত্রায়িউন্নীত করেছিলেন। এভাবে এই সব লেখকদের লেখায় “সস্কৃতি” ও সভ্যতার মধ্যে বৈপরীত্য অন্তর্নিহিত ছিল, এমনকি যখন তা প্রকাশ করা হয় নি তখনও এমনটা প্রকাশ পেত। নৃ বিজ্ঞানী ই. বি. টেইলরের ভাষ্যমতে, এটা হচ্ছে “সেই জটিল পুরোটা যার মধ্যে জ্ঞান, বিশ্বাস, শিল্প, নৈতিকতা, আইন, প্রথা, নৈতিকতা এবং অন্যান্য যোগ্যতা ও স্বভাবগুলো যা মানুষ সমাজের সদস্য হিসেবে আহরণ করে।”[১০] ক্যামব্রিজ ইংলিশ ডিকশনারি বর্ণনা করেছে যে সংস্কৃতি হচ্ছে “জীবন যাপনের পন্থা, বিশেষকরে নির্দিষ্ট একটি সময়ে নির্দিষ্ট একটি দলের মানুষদের সাধারণ প্রথাসমূহ ও বিশ্বাসগুলো।[১২] পরিবর্তন প্রত্নতাত্ত্বিক তথ্য থেকে ধারণা করা হয়েছে ক্রমবর্ধমান সংস্কৃতির জন্য মানুষের ক্ষমতা প্রায় ৫০০, ০০০-১৭০, ০০০ বছর আগে উদ্ভূত হয়েছে। রেইমন পানিক্কার ২৯টি উপায়ে সাংস্কৃতিক পরিবর্তন হয়েছিল বলে চিহ্নিত করেছেন। এর মধ্যে প্রবৃদ্ধি, উন্নয়ন, বিবর্তন, উদ্ঘাতন, নবরূপদান, নতুন ভাবনা, সংস্কার, নতুন ভাব, প্রথা, রীতি উদ্ভাবন, পুনর্জাগরণ, বিপ্লব, পরিব্যক্তি, উন্নতি, বিকিরণ, আত্মীকরণ, ধার করা, মানসিক ঔদার্য, সমন্বয় প্রচেষ্টা, আধুনিকীকরণ, দেশিয়করণ, এবং রূপান্তকরণ রয়েছে। এই প্রেক্ষাপটে, আধুনিকীকরণকে আলোকিত যুগের বিশ্বাস এবং অনুশীলন যেমন: বিজ্ঞান, যুক্তিবাদ, শিল্প, বাণিজ্য, গণতন্ত্র, এবং উন্নতির লক্ষণকে গ্রহণ করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষ করা যেতে পারে। সাংস্কৃতিক আবিষ্কারের অর্থ হচ্ছে যে কোন নতুন বিষয় প্রবর্তন যা নতুন আর যা একটি দলের মানুষের জন্য দরকারী আর তাদের আচরণে তা প্রকাশিত কিন্তু তা দেখার মতো কোন বস্তু না। মানবতা বৈশ্বিক “তরান্বিত সংস্কৃতি পরিবর্তন সময়” এর মধ্যে রয়েছে, আন্তর্জাতিক বাণিজ্য, গণমাধ্যম, এবং সর্বোপরি অন্যান্য উপাদানের মধ্যে জনসংখ্যা বিস্ফোরণ রয়েছে। সংস্কৃতি পুর্বের অবস্থানে ফিরিয়ে নেয়া মানে একটি সমাজের সাংস্কৃতিক ধারণাকে পুনরায় নির্মাণ করা। সংস্কৃতিগুলো উভয় শক্তি যা পরিবর্তনের কথা বলছে আর যা পরিবর্তনকে প্রতিহত করছে তাদের দ্বারা অভ্যন্তরীণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। এই শক্তিগুলো সামাজিক কাঠামো আর প্রাকৃতিক ঘটনাবলীর সাথে সম্পর্কিত আর সাংস্কৃতিক ভাবের চিরস্থায়ীকরণ এবং অনুশীলনসহ পরিবর্তনের অধীন বর্তমান কাঠামোগুলোর অন্তর্ভুক্ত। সামাজিক দন্দ্ব এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন একটি সমাজের মধ্যে সামাজিক গতি পরিবর্তন করে এবং নতুন সাংস্কৃতিক আদর্শ উন্নীত করে, এবং উৎপাদনক্ষম কর্ম তরান্বিত করে বা সক্ষম করে সমাজের পরিবর্তন করতে পারে। এই সামাজিক পরিবর্তনগুলো আদর্শ পরিবর্তনগুলোর এবং অন্যান্য ধরনের সাংস্কৃতিক পরিবর্তনের সঙ্গী হয়। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের নারী আন্দোলন নতুন অনুশীলনে অন্তর্ভুক্ত করে যা লৈঙ্গিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে পরিবর্তন তৈরি করে লিঙ্গ এবং অর্থনৈতিক কাঠামো দুটোকেই পরিবর্তন করে। পরিবেশগত অবস্থাও উপাদান হিসেবে গণ্য হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, বরফ যুগের শেষে ক্রান্তীয় বনাঞ্চল ফিরে আসায় গার্হস্থ্য জীবনের প্রতি আগ্রহী করে তোলার উপযুক্ত গাছপালা সহজপ্রাপ্য হয়, যা কৃষিকাজ আবিষ্কারের পথ প্রদর্শন করে, যা পালাক্রমে অসংখ্য সাংস্কৃতিক পরিবর্তন বা নতুন সংস্কৃতির উদ্ভাবন এবং সামাজিক অগ্রসরমানতায় পরিবর্তন আনে। বিভিন্ন সমাজের সংযোগের মাধ্যমে সংস্কৃতি বাহ্যিকভাবে প্রভাবিত হয়, যা সামাজিক পরিবর্তন তৈরি করতে পারে বা বাধা দিতে পারে আর সংস্কৃতির অনুশীলনে পরিবর্তন আনতে পারে। যুদ্ধ বা সম্পদ নিয়ে প্রতিযোগিতা প্রযুক্তিগত উন্নয়ন বা সামাজিক গতিশীলতাকে প্রভাবিত করতে পারে। সেইসাথে, সাংস্কৃতিক ভাব বা আদর্শ আশ্লেষ বা সাংস্কৃতিক অভিযোজনের মাধ্যমে এক সমাজ থেকে আরেক সমাজে বদল হতে পারে। আশ্লেষের ক্ষেত্রে কোন কিছুর রূপ (এর অর্থ হতে হবে এমন না) এক সংস্কৃতি থেকে আরেক সংস্কৃতিতে চালিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, পশ্চিমা রেস্তোরার চেইন এবং রান্নার ব্র্যান্ড চীনের মানুষের কাছে কৌতূহল ও মুগ্ধতা ছড়িয়েছে যে কারণে চীন বিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে দেশটির অর্থনীতি আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে উন্মুক্ত করেছে। “উদ্দীপক আশ্লেষ” (ভাবনা বা আদর্শের ভাগাভাগি) একটি সংস্কৃতির একটি উপাদানকে নির্দেশ করে যা অন্য সংস্কৃতির উদ্ভাবনে বা প্রসারে নেতৃত্ব দেয়। অন্যদিকে “সরাসরি ধার করা,” এক সংস্কৃতি থেকে অন্য সংস্কৃতিতে প্রযুক্তিগত বা বাস্তব আশ্লেষ নির্দেশে সহায়ক। উদ্ভাবনের আশ্লেষ তত্ত্ব কেন এবং কখন স্বতন্ত্র ব্যক্তি এবং সংস্কৃতিগুলো নতুন ভাবনা, অনুশীলন, এবং দ্রব্য গ্রহণ করে তার একটি গবেষণা-ভিত্তিক মডেল উপস্থাপন করে। সাংস্কৃতিক অভিযোজনের বিভিন্ন অর্থ আছে, কিন্তু এই প্রেক্ষাপটে একটি সংস্কৃতির সঙ্গে আরেকটি সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্যের বদলকে নির্দেশ করে, যেমন ঔপনিবেশিক প্রক্রিয়ার সময়ে বিশ্ব জুড়ে নেটিভ অ্যামেরিকান গোষ্ঠিগুলো এবং অসংখ্য আদিবাসীদের বেলায় যা ঘটেছে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে সম্পর্কিত প্রক্রিয়ায় আত্তীকরণ করে ( একজন ব্যক্তির বিভিন্ন সংস্কৃতি গ্রহণ) এবং বিভিন্ন সংস্কৃতির মিলে যাওয়া বা সমকেন্দ্রি হওয়া। বিভিন্ন সংস্কৃতির মিশে যাওয়া এবং চিন্তা, ভাবনা, এবং বিশ্বাসের ভাগাভাগিতে সংস্কৃতির বহুজাতিক প্রবাহ ‍গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। নৃবিজ্ঞান যদিও পৃথিবীজুড়ে নৃবিজ্ঞানীরা সংস্কৃতি বিষয়ে টেইলরের সংজ্ঞা নির্দেশ করেন।[৩১] ২০ শতকে অ্যামেরিকার নৃবিজ্ঞানে “সংস্কৃতি” প্রধান ও সমন্বয় সাধনের ধারণা হিসেবে উদ্ভূত হয়েছে, যেখানে এটি সাধারণভাবে মানুষের চিরন্তন ক্ষমতাকে নির্দেশ করে শ্রেণীবদ্ধ এবং মানুষের অভিজ্ঞতাগুলোকে প্রতীকায়িতভাবে সংকেতাবদ্ধ করতে এবং সামাজিক সংকেতাবদ্ধ অভিজ্ঞতাগুলোকে প্রতীকায়িতভাবে যোগাযোগ করতে। অ্যামেরিকার নৃবিজ্ঞান চারটি ক্ষেত্রে সংঘঠিত, যার প্রতিটি সংস্কৃতির গবেষণায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে: জীববিজ্ঞানগত নৃবিজ্ঞান, ভাষাতাত্ত্বিক নৃবিজ্ঞান, সাংস্কৃতিক নৃবিজ্ঞান আর অ্যামেরিকার প্রত্নতত্ত্ব বিজ্ঞান[৩২][৩৩][৩৪][৩৫] কালচারব্রিল্লি (Kulturbrille) বা “সাংস্কৃতিক আয়না” শব্দটি জার্মান অ্যামেরিকান নৃবিজ্ঞানী ফ্রাঞ্জ বোয়াস Franz Boas উদ্ভাবন করেন, এতে নিজের দেশকে যে আয়না’য় দেখা যায় তার কথা নির্দেশ করা হয়। মার্টিন লিন্ডস্ট্রম দাবি করেন যে কালচারব্রিল্লি যে সংস্কৃতিতে আমরা বাস করি তা সহজে বুঝতে সাহায্য করে, সেইসাথে “আমাদের এমন কিছু দিয়ে বাঁধে যা দেখে তাৎক্ষণিকভাবে বহিরাগতরা সহজে কিছু শিখতে পারে।”[৩৬] সমাজবিজ্ঞান সংস্কৃতির সমাজবিজ্ঞান সমাজে প্রদর্শিত সংস্কৃতি সম্পর্কে অবগত করে।সমাজবিজ্ঞানী জিঅরগ সিমমেল Georg Simmel (১৮৫৮–১৯১৮) এর মতে, সংস্কৃতি নির্দেশ করে “কোন ব্যক্তির ইতিহাসে যা বিমূর্ত হয়ে আছে তার বাহ্যিক রূপের চর্চা।” [37] চিন্তার ধারা, কার্য সম্পাদনের ধারা, এবং বস্তু যা একসঙ্গে মানুষের জীবন ধারা তৈরি করে তাকে সমাজবিজ্ঞানের ক্ষেত্র থেকে সংস্কৃতি বলে। সংস্কৃতি দুই ধরনের হতে পারে, অবস্তুগত সংস্কৃতি ও বস্তুগত সংস্কৃতি। [6] অবস্তুগত সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছে শারীরিক অবয়বহীন ভাবনা, যা প্রতিটি ব্যক্তি’র তাদের সংস্কৃতি সম্পর্কিত, মূল্যবোধ, বিশ্বাস প্রক্রিয়া, নিয়ম নীতি, আদর্শ, নৈতিকতা, ভাষা, সংঘঠন, এবং প্রতিষ্ঠান কিন্তু বস্তুগত সংস্কৃতি বস্তু ও স্থাপত্যের মধ্যে সংস্কৃতির শারীরিক উপস্থিতি । এই পদটি শুধুমাত্র প্রত্নতত্ত্ব ও নৃ-বিজ্ঞান পাঠে প্রাসঙ্গিক কিন্তু নির্দিষ্টভাবে সকল বাস্তবিক উপস্থিতি সংস্কৃতি, অতীত ও বর্তমানে আরোপ করা যায়। উইমার জার্মানিতে (১৯১৮-১৯৩৩) প্রথম সাংস্কৃতিক সমাজবিজ্ঞান উদ্ভূত হয়, সেখানে সমাজবিজ্ঞানী আলফ্রেড ওয়েবার কালচারসোজিওলজি ( Kultursoziologie) শব্দটি ব্যবহার করেন। এরপরে ১৯৬০ সালে ইংরেজিতে কথা বলা দেশগুলোতে কালচারাল টার্ন-এর একটি পণ্য হিসেবে সাংস্কৃতিক সমাজবিজ্ঞান “পুনরায় আবিষ্কৃত হয়। সংস্কৃতি অধ্যয়ন বিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে যুক্তরাজ্যের সমাজবিজ্ঞানীগণ এবং স্টুয়ার্ট হল ও রেইমন্ড উইলিয়ামসের মত মার্ক্সবাদে প্রভাবিত কিছু পণ্ডিত সংস্কৃতি অধ্যয়ন-র উন্মেষ ঘটান। মার্ক্সবাদ ও সমালোচক তত্ত্বের মত দর্শনের কিছু পাঠশালা দাবি করে যে, সংস্কৃতিকে প্রায়শই রাজনৈতিকভাবে অভিজাত-শ্রেণীর একটি হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা হয় যা নিম্ন শ্রেণীর মানুষদের নিয়ন্ত্রণ করে এবং একটি "ভ্রান্ত চেতনা"র সৃষ্টি করে; সংস্কৃতি অধ্যয়নের পাঠ্যক্রমে এ ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি বহুলভাবে প্রচলিত। আরও দেখুন উইকিপ্রকল্প সংস্কৃতি নৃবিজ্ঞান সাংস্কৃতিক অঞ্চল বাংলাদেশের সংস্কৃতি ভারতের সংস্কৃতি সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয় (বাংলাদেশ) সংস্কৃতি সংসদ জনপ্রিয় সংস্কৃতি বুদ্ধিজীবী সাংস্কৃতিক অধ্যয়ন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সংস্কৃতির সংজ্ঞা Cultura: International Journal of Philosophy of Culture and Axiology সংস্কৃতি সাংস্কৃতিক ভূগোল মূল বিষয়ের নিবন্ধ সামাজিক ধারণা সামাজিক নির্মাণবাদ
https://en.wikipedia.org/wiki/Culture
Culture
Culture ( KUL-chər) is a concept that encompasses the social behavior, institutions, and norms found in human societies, as well as the knowledge, beliefs, arts, laws, customs, capabilities, and habits of the individuals in these groups. Culture is often originated from or attributed to a specific region or location. Humans acquire culture through the learning processes of enculturation and socialization, which is shown by the diversity of cultures across societies. A cultural norm codifies acceptable conduct in society; it serves as a guideline for behavior, dress, language, and demeanor in a situation, which serves as a template for expectations in a social group. Accepting only a monoculture in a social group can bear risks, just as a single species can wither in the face of environmental change, for lack of functional responses to the change. Thus in military culture, valor is counted a typical behavior for an individual and duty, honor, and loyalty to the social group are counted as virtues or functional responses in the continuum of conflict. In the practice of religion, analogous attributes can be identified in a social group. Cultural change, or repositioning, is the reconstruction of a cultural concept of a society. Cultures are internally affected by both forces encouraging change and forces resisting change. Cultures are externally affected via contact between societies. Organizations like UNESCO attempt to preserve culture and cultural heritage.
1223
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%B2
ভূগোল
ভূগোল (, যেটি এসেছে গ্রীক শব্দ “”, বা, geographia, থেকে; যার শাব্দিক অর্থ: "পৃথিবী সম্পর্কিত বর্ণনা বা আলোচনা") হচ্ছে বিজ্ঞানের সেই শাখা যেখানে পৃথিবীর ভূমি, এর গঠন বিন্যাস, এর অধিবাসী সম্পর্কিত সমস্ত প্রপঞ্চ (phenomenon / ক্রিয়া-প্রক্রিয়া) সংক্রান্ত বিষয়াদি আলোচিত হয়। এই শব্দটি খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতকে গ্রিক জ্ঞানবেত্তা এরাটোসথেনিস (২৭৬–১৯৪ খ্রিস্টপূর্ব) প্রথম ব্যবহার করেন। ভূগোলে মানুষের বসবাসের জগৎ ও তার সাথে সম্পর্কিত সমস্ত বিষয় নিয়েই আলোচনা করা হয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপঃ ভৌত ভূগোলে জলবায়ু, ভূমি ও জল নিয়ে গবেষণা করা হয়; সাংস্কৃতিক ভূগোলে কৃত্রিম, মনুষ্যনির্মিত ধারণা যেমন দেশ, বসতি, যোগাযোগ ব্যবস্থা, পরিবহন, দালান, ও ভৌগোলিক পরিবেশের অন্যান্য পরিবর্তিত রূপ আলোচনা করা হয়। ভূগোলবিদেরা তাদের গবেষণায় অর্থনীতি, ইতিহাস, জীববিজ্ঞান, ভূতত্ত্ব এবং গণিতের সহায়তা নেন। সাধারণতঃ প্রায়শই এটিকে প্রাকৃতিক ভূগোল ও মানবীয় ভূগোল নামক দুটি প্রধান ভাগে ভাগ করা হয়। ভূগোলের চারটি ঐতিহাসিক গবেষণা পদ্ধতি হচ্ছেঃ প্রকৃতি ও মানবজাতি সম্পর্কিত স্থানিক বিশ্লেষণ, স্থান ও অঞ্চল সম্পর্কিত এলাকা পঠন, মানব-ভুমি সম্পর্ক পঠন এবং ভূবিজ্ঞান। ভূগোলকে "পৃথিবী পঠন-বিভাগ" ও "মানুষ এবং প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের মধ্যকার সেতু-বন্ধন" বলেও উল্লেখ করা হয়ে থাকে। প্রাচীন গ্রিক পণ্ডিত এরাটোসথেনিস (২৭৬-১৯৪ খ্রীস্টপূর্ব) পৃথিবীর বর্ণনা অর্থে সর্বপ্রথম এ Geography শব্দটির ব্যবহার করেছিলেন। Geography→Geo (পৃথিবী)+ graphos (বর্ণনা বা বিবরণ) অর্থাৎ Geography শব্দের অর্থ হলো পৃথিবীর বর্ণনা । বাংলা ভাষায় প্রাচীন হিন্দু পুরাণে ব্যবহৃত ভূগোল শব্দটি ‘জিওগ্রাফি’-এর প্রতিশব্দ হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে; যদিও ভূগোল শব্দটি ‘জিওগ্রাফি’ শব্দের মর্মার্থ প্রকাশ করে না। এ ছাড়া বর্তমান জিওগ্রাফির সংজ্ঞা অনুসারে ‘ভূগোল শব্দটি দিয়ে জিওগ্রাফি শব্দটিকে ধারণ করা যায় না। বাংলা একাডেমির ইংরেজি-বাংলা অভিধানে (তৃতীয় সংস্করণ, ২০১৫) জিওগ্রাফির প্রতিশব্দ ‘ভূগোলবিদ্যা’ বা ‘ভূবিজ্ঞান’ করা হয়েছে, ‘ভূগোল’ নয়। এ কারণে বাংলাভাষা সচেতন অনেক ভূগোলবিদ জিওগ্রাফির প্রতিশব্দ হিসেবে ‘ভূবিদ্যা’ শব্দটির ব্যবহারে অধিক আগ্রহী। মানচিত্রাঙ্কনবিদ এবং বিভিন্ন স্থানের নাম ও সংখ্যা বিষয়ক অধ্যয়নকারীকে ভূগোলবিদদের সাথে মিলিয়ে ফেলা ঠিক নয়; যদিও অনেক ভূগোলবিদ ভূসংস্থান ও মানচিত্রাঙ্কন বিষয়ে অধ্যয়ন করে থাকেন, তবুও প্রকৃতপক্ষে এটা তাদের মূল বিচরণক্ষেত্র নয়। শাখা সমূহ ভূগোলের মূল বিষয়বস্তুকে বর্ণনা এবং বিশ্লেষণের সুবিধার্থে: প্রাকৃতিক ভূগোল এবং মানবীয় ভূগোল - এই দু'টি শাখায় বিভক্ত করা হয়। প্রাকৃতিক ভূগোল প্রাকৃতিক ভূগোল হলো ভূগোলের সেই অংশ যেখানে পৃথিবীর বিভিন্ন অংশ ও তাদের গাঠনিক উপাদান নিয়ে আলোচনা করা হয়। এটি মূলত: অশ্মমণ্ডল, বারিমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল, ভূপৃষ্ঠ, এবং বৈশ্বয়িক উদ্ভিদ জগৎ এবং প্রাণী জগত (জীবমণ্ডল) নিয়ে গঠিত এবং তাদের সমস্যা এবং তার সমাধান নিয়ে আলোচনা করে থাকে। প্রাকৃতিক ভূগোলের বিভিন্ন শাখা গুলো নিম্বরুপ: জ্যোতির্বিদ্যা ভূতত্ত্ববিদ্যা জলবায়ু বিজ্ঞান সমুদ্রবিদ্যা মৃত্তিকা ভূগোল উদ্ভিদবিদ্যা প্রাণীভূগোল পদার্থবিজ্ঞানপ্রাকৃতিক ভূগোলের সংজ্ঞা ভূত্বকের উপরিভাগের ভৌত পরিবেশ এবং এতে কার্যরত বিভিন্ন ভূপ্রাকৃতিক প্রক্রিয়াসমূহ বিজ্ঞানের যে শাখায় সমীক্ষা করা হয়, তাকে প্রাকৃতিক ভূগোল বলে। অধিকাংশ ভূগোলবিদ ভূগোলকে প্রাকৃতিক ও মানবিক নামক দুই শাখায় বিভক্ত করতে আগ্রহী। আবার অনেকে ভূপৃষ্ঠে জীবমণ্ডলের বাস্তুসংস্থানকে উপেক্ষা করা সমীচীন নয় বিধায় ভূগোলকে প্রাকৃতিক, মানবিক ও জীবভূগোল নামক তিন শাখায় বিভক্ত করে থাকেন। বিগত কয়েক দশকে প্রাকৃতিক ভূগোলের সংজ্ঞা, বিষয়বস্তু এবং পঠনপাঠন পদ্ধতিতে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। শুরুতে প্রাকৃতিক ভূগোল বলতে কেবল প্রাকৃতিক পরিবেশের (ভূমিবন্ধুরতা, পানি ও বায়ু) অধ্যয়নকে বুঝাতো। যেমন- আর্থার হোমসের (Arther Holmes, 1960) মতে, ‘পৃথিবী পৃষ্ঠের বন্ধুরতা, সাগর-মহাসাগর এবং বায়ুমণ্ডলের বিষয়াদি যা নিয়ে প্রাকৃতিক পরিবেশ গঠিত, তার সমীক্ষাই হচ্ছে প্রাকৃতিক ভূগোল। কার্ল রিটারের (Carl Ritter, 1779-1859) মতে, ‘প্রাকৃতিক ভূগোল হচ্ছে বিজ্ঞানের সেই শাখা যা পৃথিবীর সমস্ত অবয়ব, বৈচিত্র্য ও সম্পর্কসহ একটি স্বতন্ত্র একক হিসেবে বিবেচনা করে।’ হার্টশোর্ন বলেন, ‘ভূপৃষ্ঠের পরিবর্তনশীল বৈশিষ্ট্যের সঠিক, সুবিন্যস্ত ও যুক্তিসঙ্গত বর্ণনা ও ব্যাখ্যা প্রদান করা প্রাকৃতিক ভূগোলের কাজ।’ এ দিক থেকে বিবেচনা করলে, প্রাকৃতিক ভূগোল কেবল কতিপয় ভূবিজ্ঞান সম্পর্কিত বিষয়ের একীভবনই নয়, এটি প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে মানুষের কর্মকাণ্ডের আন্তঃক্রিয়ার ধরনও পর্যালোচনা করে। ভূগোলের একটি প্রতিষ্ঠিত শাখা হিসেবে প্রাকৃতিক ভূগোল আঞ্চলিক প্রেক্ষাপটে পারিসরিক (spatial) ধরন এবং ভূপৃষ্ঠের পরিবেশের উপাদানগুলোর পারিসরিক সম্পর্ক সমীক্ষা করে। এ ছাড়াও এটি আঞ্চলিক ধরনের সাথে পারিসরিক সম্পর্কের কারণ, একই সাথে পরিবেশের উপাদানগুলোর পরিবর্তনের কারণও ব্যাখ্যা করে থাকে। এ থেকে বলা যায়, ভূমি, বায়ু, পানি এবং প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবনধারণের সহায়ক যে জীবমণ্ডল, তার বিস্তারিত সমীক্ষাই হচ্ছে প্রাকৃতিক ভূগোল। প্রাকৃতিক ভূগোলের বিকাশ প্রাকৃতিক বিশ্ব সম্পর্কিত জ্ঞানের আলোচনার ক্ষেত্র বোঝাতে প্রাকৃতিক ভূগোল (geography)শব্দটি ব্যবহার করা হয়। এ ক্ষেত্রটি ভূগোল জ্ঞানের পুরো শাখাটির মতোই প্রাচীন। চিরায়ত গ্রিক যুগে বিজ্ঞানের বিষয় হিসেবে ভূগোলের উৎপত্তি এবং উনবিংশ শতকের শেষভাগে নৃভূগোল (Anthropogeography) বা মানবিক ভূগোলের উৎপত্তির পূর্ব পযর্ন্ত ভূগোল ছিলো মূলত প্রাকৃতিক বিজ্ঞান : অবস্থানের সমীক্ষা ও জ্ঞাত পৃথিবীর সকল স্থানের ধারাবাহিক বর্ণনা। ভারত প্রাচীন ভারতে ভূগোল তথা ভূবিদ্যা-র আলোচনা পাওয়া যায় বেদ ও প্রাচীন পুরাণে। বেদ-এর লিখিত-রচনা কাল আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব প্রথম সহস্রাব্দের দ্বিতীয় ভাগ। অথর্ববেদ-এ প্রাচীন পুরাণ-এর উৎস সম্পর্কে উল্লেখ পাওয়া যায়। বিদ্বজ্জনদের মতে খ্রিষ্টপূর্ব ১২০০ - ১০০০ অব্দে অথর্ববেদ এর স্তোত্র গুলি রচিত হয়েছিল। প্রাচীন পুরাণের রচয়িতাগণ পৃথিবীকে সাতটি মহাদেশীয় দ্বীপে ভাগ করেছিলেন - জম্বু দ্বীপ, ক্রৌঞ্চ দ্বীপ, কুশ দ্বীপ, প্লক্ষ দ্বীপ, পুষ্কর দ্বীপ, শক দ্বীপ ও শাল্মলী দ্বীপ ও সেই সব দ্বীপের জলবায়ু আর ভূ-প্রকৃতির বিবরণ দিয়েছিলেন। বরাহমিহির পৃথিবীতে জল-এর সৃষ্টি, মেঘ ও বৃষ্টিপাত, মহাজাগতিক গ্রহ সম্পর্কিত বস্তু সমূহের অবস্থান আর সঞ্চারণ পথ সম্পর্কে লিখেছিলেন। প্রখ্যাত গণিতজ্ঞ ও জ্যোতির্বিদ আর্যভট্ট সেই সময়ে পৃথিবীর পরিধি ২৪৮৩৫ মাইল গণনা করেছিলেন যা প্রকৃত পরিধি থেকে ০.২ % কম ছিল। চীন  (History of geography) প্রাচীন চীনে  ভূবিদ্যা-র আলোচনা পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব পঞ্চম শতক থেকে। ভৌগোলিক মানচিত্র গঠিত হত তৎকালীন সাম্রাজ্য সমূহের অবস্থান ও বিস্তৃতি, নদী অববাহিকা, নদীপথ ও বাণিজ্য পথের অবস্থান ইত্যাদি সহ। শুই জিং নামে তৃতীয় শতকের এক অজ্ঞাতনামা লেখকের একটি বই পাওয়া গেছে যেখানে চীনের ১৩৭ টি নদীর তৎকালীন বিবরণ পাওয়া যায়। জিয়া ড্যানের (৭৩০ ৮০৫ খ্রিষ্টাব্দ) মতো চীনা ভৌগোলিকের বিভিন্ন বৈদেশিক অঞ্চলের যথাযথ বর্ণনায় সমুদ্রপথে পারস্য উপসাগরের প্রবেশপথের বিবরণ ও মধ্যযুগীয় ইরানীদের দ্বারা সৃষ্ট সমুদ্রমধ্যে আলংকারিক স্তম্ভের কথা আছে যেগুলো আসলে জাহাজদের পথ দেখানোর বাতিঘর ছিল। নবম শতক থেকে দ্বাদশ শতক পর্যন্ত সোঙ সাম্রাজ্য এবং ত্রয়োদশ থেকে ষোড়শ শতক পর্যন্ত মিঙ সাম্রাজ্যের আমলে নিয়মানুগ ভৌগোলিক চর্চা সম্পর্কে জানা যায়। সোঙ সাম্রাজ্যের প্রখ্যাত কবি, পণ্ডিত এবং সরকারি আধিকারিক ফান চেংদা (১১২৬ - ১১৯৩ খ্রিষ্টাব্দ) চীনের দক্ষিণ প্রদেশগুলির বিভিন্ন অঞ্চলের ভূসংস্থান, কৃষি ও আর্থ বাণিজ্যিক পণ্যের উপর ভূ-বিদ্যার সনদ লিখেছিলেন। বহুবিদ্যাজ্ঞ চীনা বৈজ্ঞানিক শেন কুও (১০৩১ - ১০৯৫ খ্রিষ্টাব্দ) দেশের অভ্যন্তরে পাওয়া সামুদ্রিক জীবাশ্ম এবং বাঁশ গাছের এলাকা থেকে বহুদূরে পাওয়া বাঁশ গাছের জীবাশ্ম থেকে ভূমি-র গঠনের উপর আনুমানিক ধারণা সহ বহু গুরুত্বপূর্ণ লেখা লিখে গেছেন। এই সোঙ সাম্রাজ্যের সময়কালে কোরিয়া এবং মধ্যযুগীয় কম্বোডিয়া-ও উপর ভৌগোলিক বিবরণ সমন্বিত বই পাওয়া যায়। মিঙ সাম্রাজ্যের ভূগোলবিদ, জু জিয়াকে (১৫৮৭ - ১৬৪১ খ্রিষ্টাব্দ) চীনের বহু প্রদেশে ভ্রমণ করেছিলেন (অনেকসময় পদব্রজে)। তিনি একটি বৃহৎ ভৌগোলিক এবং ভূসংস্থানিক সনদ লিখেছিলেন যেখানে ছোটো ছোটো গিরিখাত, অভ্র ও স্ফটিক মিশ্রিত শ্লেটপাথরের মতো খনি গর্ভের অবস্থান ইত্যাদি তথ্য সংবলিত তার ভ্রমণপথের বিবরণ লিপিবদ্ধ করে গিয়েছেন। চৈনিক লেখাগুলিতে মধ্য প্রাচ্য, ভারতবর্ষ এবং মধ্য এশিয়া-র বিভিন্ন সভ্যতার বর্ণনা আছে যেহেতু খ্রিস্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে পর্যটক ঝ্যাং কিয়ানের সত্যনিষ্ঠ ও গুরুত্বপূর্ণ অভিজ্ঞতা থেকে বৈদেশিক অঞ্চলের ভূসংস্থান ও ভৌগোলিক বিশেষত্ব সম্পর্কিত তথ্য পাওয়া গিয়েছিল। মধ্য এশিয়া এবং ইউরোপ ঈজিপ্ট ও ব্যাবিলনেও প্রাচীন আলোচনা ছিল ভূবিদ্যা সম্পর্কে। ইজিপ্ট-এ নীলনদের অববাহিকা, ভূমধ্যসাগর ও পশ্চিম এশিয়া পর্যন্ত বিস্তৃত অঞ্চলের মানচিত্র এবং ব্যাবিলনে পৃথিবীর মানচিত্রের অন্যতম প্রাচীন অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া গেছে। গ্রিক-রোমান যুগে ভূবিদ্যা-র আলোচনা অনেক বিস্তার লাভ করে। অক্ষাংশ-দ্রাঘিমাংশ-উচ্চতা সম্পর্কিত তথ্য, নগর-পরিকল্পনা চিত্র, ভূমির জরীপ ও প্রকারভেদ, নদী-র দৈর্ঘ্য-প্রস্থের পরিমাপ ইত্যাদি বিষয়ে উন্নত অনুশীলন ও ব্যবহারবিধি-র প্রচলন ছিল। আনুমানিক ৪০০ খ্রিষ্টাব্দে রোমে পিউটিন্জার টেবিল হিসাবে পরিচিত এক গোটানো মানচিত্রের সন্ধান পাওয়া গেছে যেখানে রোমান সাম্রাজ্যের মধ্যের সড়কপথগুলি দেখানো আছে এবং রোমান সাম্রাজ্যের বাইরে ব্রিটেন থেকে মধ্য-প্রাচ্য হয়ে আফ্রিকা এবং তারপর ভারত, শ্রীলঙ্কা, চীন দেশের তখনকার জ্ঞাত অংশ সমূহ নিবদ্ধ আছে। একশোটির ও বেশি চিহ্ন ব্যবহৃত হয়েছিল এই মানচিত্রটি-তে। প্রাচীন গ্রিক পণ্ডিত ইরাটোসথেনেস (Eratosthenese, 276-194 BC) প্রাকৃতিক ভূগোলের অগ্রপথিক। তিনি এমন এক সময় এ বিষয়ে অবদান রাখেন যখন পণ্ডিতগণ পৃথিবীর আকার ও আকৃতি সম্পর্কেই অনিশ্চিত ছিলেন। মিশরের বিভিন্ন স্থানের দূরত্বের সাথে সূর্যের আলোক রশ্মির পতনকোণের পার্থক্য হিসাব করে পৃথিবীর পরিধি নির্ণয়ের মাধ্যমে ইরাটোসথেনেস প্রাকৃতিক ভূগোলবিদ হিসেবে ইতিহাসের পাতায় চিরস্তায়ী আসন করে নিয়েছেন। এটিই ছিলো বর্তমানে পরিচিত ভূআকৃতিবিদ্যার (Geodesy) প্রথম গবেষণা। ইরাটোসথেনেসের বহু মূল্যবান ভূগোলবিষয়ক কাজের মধ্যে এটি অন্যতম। তিনি মানচিত্রের গুরুত্বের কথা উপলব্ধি করেছিলেন এবং নিজেকে একজন দক্ষ কার্টোগ্রাফার (cartographer) হিসেবে গড়ে তুলেন। যখন পণ্ডিতগণ পৃথিবী গোলাকার না চেপ্টা এ সম্পর্কে বিতর্কে লিপ্ত, তখন ইরাটোসথেনেস গোলাকার পৃথিবীর কোন কোন স্থান সূর্যালোক দ্বারা অপর মণ্ডল অপেক্ষা অধিক উষ্ণ- এ বিষয়টি উপলব্ধি করেন এবং পৃথিবীকে কতিপয় পরিবেশমণ্ডলে বিভক্ত করে মানচিত্র তৈরি করেন। তিনি সিদ্ধান্তে আসেন যে, গোলাকার পৃথিবীতে একটি নিরক্ষীয় বলয়, দুটি মেরু বলয় এবং এদের মাঝে দুটি নাতিশীতোষ্ণ বলয় বিদ্যমান রয়েছে। ইরাটোসথেনেসের মৃত্যুর বহু শতাব্দি পর্যন্ত অনেক পণ্ডিত ইরাটোসথেনেসের জ্ঞানকে যথার্থ বলে মেনে নিতে পারেননি (ব্লিজ, ১৯৯৩)। বিখ্যাত গ্রিক ঐতিহাসিক হেরোডোটাস (Herodotus, 485-424 BC) মিসর ভ্রমণের সময় মিসরকে ‘নীল নদের দান’ বলে মন্তব্য করেন এবং নীল নদের মোহনায় পলি সঞ্চয়ের আকৃতির মাঝে গ্রিক অক্ষর ডেল্টার Δ সাদৃশ্য খুঁজে পান এ ধরনের ভূবৈচিত্র্যকে তিনি ডেল্টা (বাংলায় বদ্বীপ) নামকরণ করেন। খ্রিষ্টপূর্ব ৭৯ অব্দে প্লিনি জুনিয়র (প্লিনি সিনিয়র একজন বিজ্ঞানী ছিলেন) নেপলস উপসাগরে একটি নৌকায় দাঁড়িয়ে ভিসুভিয়াস আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত প্রত্যক্ষ করে যে লিপিবদ্ধ করেছেন, তা সত্যই বিষ্ময়কর। তিনি বর্ণনা করেছেন, আগ্নেয়গিরির উপর ব্যাঙের ছাতার আকৃতির মেঘ কীভাবে ছড়িয়ে পড়েছিলো এবং পম্পেই ও হারকোলিয়াম শহর দুটিকে জীবন্ত কবর দিয়েছিলো। নিরাপদ দূরত্বে দাঁড়িয়ে তিনি যখন আগ্নেয়গিরির ধ্বংসযজ্ঞ দেখছিলেন, তখন তিনি জানতেন না তারই মামা/মায়ের বড় ভাই (Pliny The Elder)(যিনি আবার তারই দত্তক পিতা-ও ছিলেন), ভিসুভিয়াসের লাভাস্রোতে পড়ে মারা যাচ্ছেন, স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্ধারের চেষ্টা করতে গিয়ে। পরিতাপের বিষয় হচ্ছে, প্রাচীন ভূগোলবিদদের অধিকাংশ রচনা কালের গর্ভে হারিয়ে গেছে। প্রাচীন গ্রিক ও রোমান পণ্ডিতদের সামান্য কিছু রচনা যা আমাদের পর্যন্ত এসেছে তা থেকে আমরা জাতে পারি, তখনকার নদীগুলো কত প্রশস্ত আর কত খরস্রোতা ছিলো, বর্তমানে ঘুমিয়ে আছে এরূপ কিছু আগ্নেয়গিরির কর্মকাণ্ড এবং তৎকালীন কিছু উদ্ভিদের কথা, যা বর্তমানে সেসব স্থান থেকে হারিয়ে গেছে। রোমান যুগের অবসানে ইউরোপে দীর্ঘ সময়ব্যাপী অন্ধকার যুগের শুরু হয়। মধ্যযুগে ভূগোল চর্চার দীপশিখা জ্বালিয়ে রেখেছিলো আরব অঞ্চলের মুসলিম এবং চৈনিক পণ্ডিতরা। মধ্যযুগে যুদ্ধ, আগুন এবং অবহেলার কারণে প্রাচীন অনেক মূল্যবান বই, মানচিত্র, রচনা চিরতরে হারিয়ে গেছে। পঞ্চদশ শতকে ইউরোপীয়দের সামুদ্রিক অভিযান এবং ব্যাপক আবিষ্কারের যুগে প্রাকৃতিক ভূগোলের পুনর্জাগরণ ঘটে। পর্তুগিজরা আফ্রিকার উপকূল ঘুরে এশিয়ার পূর্বপ্রান্তে এবং কলম্বাস আটলান্টিক পাড়ি দিয়ে ফিরে এসে জানায় পশ্চিমের ভূখণ্ডের কথা। মানচিত্রাঙ্কনবিদগণ সংগ্রহকৃত জ্ঞানের ভিত্তিতে সঠিক মানচিত্র তৈরি করতে শুরু করেন। নতুন আবিষ্কৃত দেশগুলো সম্পর্কে ইউরোপের শহরগুলোতে কখন বড় বড় নদী, বরফাবৃত সুউচ্চ পর্বতমালা, বোনো উপকূল, বিস্তীর্ণ সমতলভূমি, ভয়াল ভৃগুতট, সুউচ্চ বৃক্ষপূর্ণ গভীর বনভূমি, অদ্ভুত ও ভয়ঙ্কর বন্যপ্রাণি এবং অজানা সব মানুষের কথা প্রচার হতে শুরু করে। ইউরোপীয় অভিযাত্রী ও ভাগ্যন্বেষীরা সোনা ও অন্যান্য মূল্যবান খনিজসম্পদ নিয়ে ফিরে আসেন। ভৌগোলিক জ্ঞান সম্পদ লাভের চাবিকাঠিতে পরিণত হয়। ইউরোপীয়রা যখন বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে তাদের স্থাপিত উপনিবেশগুলোতে সম্পদ লুণ্ঠনের জন্য দিগ্বিদিক জ্ঞানশূন্য হয়ে নতুন ভূখণ্ডের সন্ধানে ছুটে চলছে, তখন কিছুসংখ্যক বিজ্ঞানী প্রাপ্ত নতুন নতুন তথ্যগুলো যাচাইয়ের জন্য ভ্রমণে বের হন। আলেকজান্ডার ফন হামবোল্ট তাদের মধ্যে অন্যতম, যিনি সম্পদ নয়- জ্ঞান আহরণের জন্য নতুন মহাদেশ আমেরিকায় পাড়ি জমিয়ছিলেন। তিনি দক্ষিণ আমেরিকার উত্তরাংশের ওরিনোকো নদী পর্যন্ত প্রায় তিন হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দেন এবং ইকোয়েডর, পেরুতে মাঠজরিপ করেন। ১৮০৪ সালে যুক্তরাষ্ট্রে যাওয়ার পূর্বে তিনি কিউবা ভ্রমণ করেন এবং মেক্সিকো পাগড় দেন। পরবর্তীতে তিনি সােইবেরিয়াসহ রাশিয়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ভ্রমণ করেন। পরবর্তীতে প্যারিসে স্থায়ী হয়ে তিনি আমেরিকা ভ্রমণের ওপর ৩০টি বই লেখেন এবং উনিশ শতকের বংশগতিসংক্রান্ত সেরা বৈজ্ঞানিক গ্রন্থ হিবে পরিচিত ছয় খণ্ডের ‘কসমস’ সিরিজটি প্রকাশ করেন। হামবোল্টের রচনা থেকে আমরা তার সময়ের প্রাকৃতিক ভূগোলের রাজ্য সম্পর্কে জানতে পারি। এটি প্রমাণিত হয় যে, প্রাকৃতিক ভূগোল কেবলমাত্র পৃথিবীর পৃষ্ঠসম্পর্কিত বিষয়াদিই অধ্যয়ন করে না, এটি এখন মৃত্তিকা, উদ্ভিজ্জ, প্রাণী, সমুদ্র এবং বায়ুমণ্ডল প্রভৃতিকে অন্তর্ভুক্ত করে সমীক্ষা করে। যদিও ‘ফিজিক্যাল জিওগ্রাফি’ শব্দটি সর্বজনীনভাবে গৃহীত হয়েছে, তথাপি ব্যাপক বিস্তৃত ক্ষেত্রের জন্য এর নাম ‘ন্যাচারাল জিওগ্রাফি’ হলেই অধিক মানানসই হতো। রাশিয়া প্রাকৃতিক ভূগোলের উন্নয়নে তৎকালীন সম্পদশালী রাশিয়ার জারগণ (সম্রাটগণ) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। অষ্টাদশ শতাব্দির মদ্যভাগে রাশিয়ার শাসকরা অনেক ভূগোলবিদকে মেরুপ্রদেশীয় সাইবেরিয়ার বিভিন্ন সম্ভাব্যতা জরিপের জন্য প্রেরণ করেছিলেন। রাশিয়ান ভূগোলবিদগণের মধ্যে মিখাইল লমোনোসোভ (Mikhail Lomonosov, 1711-1765)-কে প্রধান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তিনি সাইবেরিয়ার গবেষণায় নেতৃত্ব দেন। তার নেতৃত্বে পরিচালিত গবেষণার উল্লেখযোগ্য অবদানগুলো হচ্ছে- মৃত্তিকার জৈবিক উৎস উদ্‌ঘাটন, বরফখণ্ড বিচলনের একটি সমন্বিত নতির বিকাশসাধন, যা অদ্যাবধি মৌলিক হিসেবে বিবেচিত এবং তদানুযায়ী হিমবিজ্ঞান (Glaciology) নামে ভূগোলের একটি নতুন শাখার গোড়াপত্তন। লমোনোসোভের পথ ধরে উনবিংশ শতকে রাশিয়ার ভাসিলিভিচ ডকোচেভ (Vasily Vasili'evich Dokuchaev, 1846 –1903)-এর মতো বিখ্যাত ভূগোলবিদের জন্ম হয়। তিনি ‘ভূখণ্ড বা অঞ্চলের সমন্বিত নীতি’ (principle of comprehensive analysis of the territory) এবং রাশিয়ান শেরনোজেম (Russian Chernozem)-এর ওপর অবদান রাখেন, যা পরবর্তী সময়ে সহজে চিহ্নিতকরণযোগ্য ভূত্বকীয় স্তর মৃত্তিকা সম্পর্কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভৌগোলিক ধারণার সাথে পরিচিত করে| তিনি প্রথম মৃত্তিকার শ্রেণিবিন্যাস এবং মৃত্তিকা গঠনের পাঁচটি উপাদান চিহ্নিত করেন। এভাবে নতুন ভৌগোলিক সমীক্ষার ক্ষেত্র হিসেবে মৃত্তিকাবিজ্ঞান (Pedology) প্রতিষ্ঠিত হয়। একারণে ভিসিলি ডকোচেভকে মৃত্তিকাবিজ্ঞানের জনক বলা হয়। রাশিয়ান পণ্ডিতদের অবদানে জলবায়ুবিজ্ঞানও ব্যাপকভাবে সমৃদ্ধ হয়। রাশিয়ার জলবায়ুবিজ্ঞানীদের মধ্যে জার্মান বংশোদ্ভুত ভ্লাদিমির কোপেন (Wladimir Köppen)  সকলের অগ্রগণ্য। তিনি বিশ্বের জলবায়ু অঞ্চলের শ্রেণিবিভাগ করেন, যা আজও সঠিক হিসেবে সমাদৃত। যাহোক, এ মহান ভূগোলবিদ তার কাজের মাধ্যমে পুরাজলবায়ুবিজ্ঞানে (Paleoclimatology) অবদান রাখেন। ‘ভূতাত্ত্বিক অতীতের জলবায়ু’ (The climates of the geological past) নামে তার গবেষণার জন্য তাকে পুরাভূগোলের (Paleogeography) জনক বলা যায় (আলম, কে. আশলাফুল-২০১৪)। আমেরিকা উনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের প্রথমভাগের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা হচ্ছে আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের বিখ্যাত ভূগোলবিদ উইলিয়াম মরিস ডেভিস (W.M. Davis)-এর অবদান। ভূগোলের সাধারণ তত্ত্ব হিসেবে তার প্রদত্ত ‘ভৌগোলিক চক্র’ (geographical cycle) কেবল বিষয় হিসেবে ভূগোলকে তার দেশে প্রতিষ্ঠিত করেনি, বরং প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রতিষ্ঠা ও বিকাশের ক্ষেত্রে একটি মহামডেল (paradigm) হিসেবে কাজ করে। ডেভিসের মতানুসারে, সময়ের বিবর্তনে ভূগঠন পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনের মধ্যদিয়ে যায়। (উইলিয়াম মরিস ডেভিসের এ গুরুত্বপূর্ণ কাজের ফলে ভূরূপবিজ্ঞান (Geomorphology) নামে ভূগোলের একটি নতুন শাখা বিকাশ লাভ করে। প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রকৃতি সময়ের সাথে সাথে পরিবর্তীত হয়েছে। ১৮৫০ থেকে ১৯৫০ সালের মধ্যে জ্ঞানের এ শাখায় চারটি প্রধান ধারণা খুবই জোড়ালোভাবে প্রভাববিস্তার করেছিলো; যথা- (১) সমতাবাদ (Uniformitarianism) : এ তত্ত্ব পৃথিবীর বর্তমান অবস্থর জন্য বিপর্যয় শক্তি (catastrophic force) দায়ী এ ধারণা বাতিল করে দেয়। এর পরিবর্তে ধারণা দেয় যে, অবিরত সমতাসাধনের বিদ্যমান প্রক্রিয়াসমূহ আমাদের গ্রহটির অতীত ও বর্তমান অবস্থার জন্য দায়ী। (২) বিবর্তনবাদ (Evolution theory) : চার্লস ডারোউনের বিবর্তনবাদ তত্ত্বে প্রভাবিত হয়ে প্রকৃতিবিজ্ঞানীগণ প্রাকৃতিক প্রপঞ্চের (phenomena) বিভিন্নতার বিবর্তনমূলক ব্যাখ্যা প্রদান শুরু করেন। (৩) তথ্যানুসন্ধান ও জরিপ (Exploration and Survey) : ১৯০০ সালের পূর্বে পৃথিবীর বিভিন্ন স্থান আবিষ্কার ও সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের জন্য অনুসন্ধান ও জরিপ কাজে প্রাকৃতিক ভূগোলের সকল ক্ষেত্র সক্রিয়ভাবে জড়িত ছিলো। (৪) সংরক্ষণ (Conservation) : ১৮৫০ সালের প্রথম দিক থেকে একসময়ের নৈসর্গিক সৌন্দর্যবিশিষ্ট এলাকায় মানবিক উন্নয়নের ফলশ্রুতিতে পরিবেশ সংরক্ষণের চিন্তাভাবনা শুরু হয়। ১৯৫০ সালের পর থেকে দুটি শক্তি প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রকৃতি নির্ধারণে ব্যাপকভাবে ভূমিকা রাখে। যথা- (১) সংখ্যাতাত্ত্বিক বিপ্লব (Quantitative Revolution) : এসময়ে প্রাকৃতিক ভূগোলে সংখ্যাতাত্ত্বিক পরিমাপ কেন্দ্রীয় মনোযোগের বিষয়ে পরিণত হয়। মানচিত্রায়ন, মডেলসমূহ, পরিসংখ্যান, গণিত ও প্রকল্প পরীক্ষণ সবকিছু আসে পরিমাপ থেকে। (২) মানব-ভূমি সম্পর্ক (Human/Land Relationships) : পরিবেশের ওপর মানুষের কর্মকাণ্ডের প্রভাব ১৯৫০ এর দশকের পর থেকে স্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হতে শুরু করে। ফলশ্রুতিতে প্রাকৃতিক ভূগোলের বহু গবেষক পরিবেশের ওপর মানুষের প্রভাবের বিষয়ে সমীক্ষা শুরু করেন (আলম, কে. আশরাফুল-২০১৫)। প্রাকৃতিক ভূগোলের উপক্ষেত্রসমূহ পৃথিবী সম্পর্কে তথ্য আহরণের মধ্যদিয়ে ভৌগোলিক জ্ঞানের চর্চা শুরু হয়েছিলো। বর্তমান যুগে মানুষের জ্ঞানের পরিধি এতো ব্যাপক ও বিস্তৃত হয়েছে যে, কোনো একজন ব্যক্তির পক্ষে সমস্ত ভৌগোলিক জ্ঞান আহরণ করা সম্ভব নয়। ফলে দেখা দিয়েছে বিশেষায়নের ঝোঁক। আলেকজান্ডার ফন হামবোল্টের মতো প্রাকৃতিক জগতের বিষয়ে সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গি আজকের দিনে বিরল। অষ্টাদশ ও উনবিংশ শতকে ভৌগোলিক জ্ঞানের সন্ধানে উত্তরোত্তর জটিল-কঠিন পদ্ধতি বৃদ্ধির সাথে সাথে বিশেষায়ন অপরিহার্য হয়ে উঠেছে। বিজ্ঞানে বিশেষায়নের প্রয়োজন আছে। প্রথমে সামগ্রিক জ্ঞানকে কতকগুলো বিষয়ে খণ্ড করা হয়, আবার প্রতিটি বিষয়কে কতিপয় বিশেষীকরণে ভাগ করা হয়। এভাবেই বিজ্ঞানের জ্ঞানের পরিধি বিস্তৃতি লাভ করে। বিগত শতকে প্রাকৃতিক ভূগোলের বিভিন্ন বিষয় একটি গুচ্ছ হিসেবে বিকশিত হয়েছে (ব্লিজ-১৯৯৩)।১. ভূরূপবিজ্ঞান (Geomorphology) : ভূদৃশ্যের ভূগোল ‘ভূরূপবিজ্ঞান’ বা ভূমিরূপবিজ্ঞান প্রাকৃতিক ভূগোলের সর্বাপেক্ষা উৎপাদনশীল একটি ক্ষেত্র। মূল ইংরেজি পরিভাষাটি চয়ন করেন জার্মান ভূতত্ত্ববিদ আলবার্ট প্যাঙ্ক (Albert Penck)। গ্রিক তিনটি শব্দ Geo অর্থ পৃথিবী, morph অর্থ গঠন বা আকার এবং logos অর্থ বর্ণনা দিয়ে ভূপৃষ্ঠের গঠনকাঠামো সম্পর্কিত আলোচনার ক্ষেত্রকে বোঝানো হয়েছে। ভূপৃষ্ঠের অবয়বসমূহের উৎপত্তি, বিকাশ, প্রকৃতি এবং এগুলোর উদ্ভবের পশ্চাতে ক্রিয়াশীল কার্যকারণ প্রভৃতির বিজ্ঞানসম্মত পর্যালোচনাই হচ্ছে ভূরূপবিজ্ঞান। ভূরূপবিজ্ঞান হচ্ছে ভূগোলের সেই শাখা, যাতে অভ্যন্তরীণ অবস্থাসহ পৃথিবীর উপরিভাগের ভূদৃশ্য পরিবর্তনকারী প্রাকৃতিক শক্তিগুলোর প্রভাব সম্পর্কে আলোচনা করে। ভূরূপবিজ্ঞানের বিষয়বস্তু মূলত (১) ভূমির বন্ধুরতা বা ভূগঠনের দিক এবং স্কেল, (২) পদ্ধতি- যা ভূপৃষ্ঠের আকৃতি প্রদান করে, এবং (৩) যে দৃষ্টিভঙ্গিতে ভূমিরূপ পর্যালোচনা করা হচ্ছে তার ওপর নির্ভর করে (আলম, ২০১৪)।২. জলবায়ুবিজ্ঞান (Climatology) : আবহবিদ্যা ও প্রাকৃতিক ভূগোল যৌথভাবে জলবায়ু ও তার বিস্তৃতি আলোচনার জন্য জলবায়ুবিজ্ঞান গঠন করেছে। জলবায়ুবিজ্ঞান কেবলমাত্র জলবায়ুর শ্রেণিবিভাগ বা বিস্তৃতিই পর্যালোচনা করে না, বৃহত্তরভাবে এটি মানব সমাজের সাথে জলবায়ুর সম্পর্ক, জলবায়ু পরিবর্তন, উদ্ভিজ্জের ধরন, মৃত্তিকা গঠনসহ পরিবেশের বিভিন্ন প্রশ্ন ও অন্তর্ভুক্ত করে। পৃথিবীকে বেষ্টনকারী বায়ুমণ্ডলের উপাদন এবং এদের বৈশিষ্ট্যের বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনাই হচ্ছে আবহবিদ্যা ও জলবায়ুবিজ্ঞান। নির্দিষ্ট সময়ে কোনো স্থানের বায়ুমণ্ডলের উপাদানগুলোর সমষ্টিগত অবস্থাকে আবহাওয়া বলে। অপরদিকে, কোনো স্থানের আবহাওয়ার দীর্ঘকালীন গড় অবস্থা পর্যালোচনা করলে যে সাধারণ অবস্থা দেখা যায়, তাকে জলবায়ু বলে। জলবায়ুবিজ্ঞানের তিনটি শাখা রয়েছে। এগুলো হলো : (১) প্রাকৃতিক জলবায়ুবিজ্ঞান, (২) আঞ্চলিক জলবায়ুবিজ্ঞান ও (৩) ফলিত জলবায়ুবিজ্ঞান।৩. জীবভূগোল (Biogeography) : জীববিজ্ঞানের দিক থেকে উদ্ভিদবিজ্ঞান, বাস্তুবিদ্যা ও প্রাণিবিজ্ঞান- এ তিনটি উপক্ষেত্র প্রাকৃতিক ভূগোলের সাথে সম্পর্কিত। যখন জীববিজ্ঞান এবং প্রাকৃতিক ভূগোল উপরিস্থাপিত (overlap) হয়, তখন বৃহৎ উপক্ষেত্র জীবভূগোলের সৃষ্টি হয়, কিন্তু সেখানে জীবভূগোল নিজেই বিশেষায়িত। প্রাকৃতিক ভূগোল উদ্ভিদবিদ্যার সমন্বয়ে উদ্ভিদভূগোল গঠন করে এবং প্রাণিবিদ্যার সাথে সমন্বয়ে প্রাণিভূগোল উপক্ষেত্রের সৃষ্টি করে। স্মর্তব্য যে, জীবভূগোল নিজেই বাস্তুবিদ্যার সংযোজক, যা এই উপক্ষেত্র দুটির মধ্যে অবস্থান করে; বাস্তবে প্রাণিভূগোল ও উদ্ভিদ ভূগোল উভয়েই জীবভূগোলের অন্তর্ভুক্ত। জীবমণ্ডলের পর্যালোচনাই হচ্ছে জীবভূগোল, যাতে প্রাকৃতিক পরিবেশ, মৃত্তিকা, প্রাণী ও উদ্ভিদ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। জীবভূগোল শব্দটি দ্বারা জীববিজ্ঞান ও ভূবিদ্যা উভয়কে একত্রে নির্দেশ করে। অশ্মমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল ও বারিমণ্ডলে জীবের বসবাসের উপযোগী অংশ যা জীবমণ্ডল নামে পরিচিত- এর আলোচনার ক্ষেত্রের অন্তর্ভুক্ত। জীবমণ্ডলের জৈব বিষয়গুলো উদ্ভিদবিদ্যা, প্রাণিবিদ্যা, প্রাণ-রসায়ন প্রভৃতি শাখায় পর্যালোচনা করা হলেও জ্ঞানের পৃথক শাখা হিসেবে ভূগোল এর অর্থ ও বিষয়বস্তুর ক্ষেত্রে ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে আলোকপাত করে থাকে।৪. মৃত্তিকা ভূগোল (Soil Geography) : প্রাকৃতিক ভূগোলের উপক্ষেত্র মৃত্তিকা ভূগোলের সম্পর্ক রয়েছে মৃত্তিকাবিজ্ঞানের (Soil Science) বা পেডোলজির (Pedology) সাথে। পেডোলজিস্টরা মৃত্তিকার অভ্যন্তরীণ গুণাবলি এবং মৃত্তিকার গঠন প্রক্রিয়ার ওপর আলোকপাত করে থাকেন। মৃত্তিকা ভূগোলে মৃত্তিকার পারিসরিক ধরন, বিস্তৃতি এবং জলবায়ু, উদ্ভিজ্জ ও মানুষের সাথে সম্পর্কের বিষয় আলোচনা করা হয়।৫. সমুদ্র ভূগোল (Marine Geography) : সমুদ্র ভূগোল সমুদ্রবিজ্ঞানের সাথে গভীরভাবে সম্পর্কিত। প্রকৃতপক্ষে, এটি গঠনে সহায়তাকারী অন্যতম উপাদান যেমন মানবীয়, তেমনি প্রাকৃতিক। যে শাস্ত্রে বারিমণ্ডলের সমীক্ষা করা হয়, তাকে সমুদ্রবিজ্ঞান বলে। এটি বারিমণ্ডলের প্রাকৃতিক ও জৈবিক বিষয়গুলো বর্ণনা করে। সমুদ্রবিজ্ঞান অনেকগুলো উপক্ষেত্রে বিভক্ত। এগুলোর মধ্যে রয়েছে সমুদ্র ভূতত্ত্ব, সমুদ্র ভূরূপবিজ্ঞান, প্রাকৃতিক সমুদ্রবিদ্যা, সমুদ্রের জলের রসায়ন, জৈব সমুদ্রবিদ্যা ইত্যাদি (আলম, ২০১৪)।5. জ্যোতির্বিজ্ঞান' আদি বিজ্ঞানের প্রকৃতি গুগলের নিজস্ব শাখা হলো জ্যোতির্বিজ্ঞান। ভূগোলের এই শাখায় সৌরমণ্ডল তথা মহাবিশ্বের সমস্ত গ্রহ নক্ষত্র,ব্ল্যাকহোল,গ্যালাক্সি সম্পর্কে ভূগোলের শাখায় আলোচনা করা হয়। একটি প্রাকৃতিক ভূগোলের একটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাচীন শাখা। প্রাকৃতিক ভূগোলের উদ্দেশ্য বায়ু, জল, জীব, মৃত্তিকা এবং ভূগঠন প্রাকৃতিক ভূগোল আলোচনার প্রধাণ উদ্দেশ্য এবং মানুষ কর্তৃক ভূপৃষ্ঠে এসবের ব্যবহার সাধারণভাবে আলোচনা করা হয়। আবার পৃথিবীকে মানুষের সর্বোত্তম ব্যবহারের স্বার্থে বিজ্ঞানীগণ আনুষ্ঠানিকভাবে এগুলোর বিস্তারিত আলোচনা করে থাকেন। প্রাকৃতিক ভূগোল আলোচনার উদ্দেশ্যকে তাদের মাত্রা (dimension) এবং প্রাকৃতিক বৈশিষ্ট্য অনুসারে ভাগ করা যায়। আমরা যে ভূপৃষ্ঠে বসবাস ও হাঁটাচলা করি, প্রাকৃতিক ভূগোলে ভূপৃষ্ঠ বলতে তারও থেকে বেশি কিছু বোঝায়। ভূপৃষ্ঠ কেবল একটি আয়তন (volume) নয়, বরং এর সাথে মানুষের সম্পর্ক ও অনুভবের দ্বারা একে চিহ্নিত করতে হবে। এ আয়তনের কেন্দ্রে রয়েছে ভূপৃষ্ঠ, যেখানে আমরা বসবাস করি। এরসাথে ভূপৃষ্ঠের ঠিক নিচে ভূত্বকের একটি অংশ অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। ভূমিরূপ ভূত্বকের পৃষ্ঠকে সজ্জিত করেছে, যা মূলত অভ্যন্তরীণ ও বাহ্যিক প্রাকৃতিক শক্তির কর্মকাণ্ডের ফলাফল। ভূপৃষ্ঠের উপরের বায়ুমণ্ডলের কিছু অংশ এ আয়তনের অন্তর্ভুক্ত, যা প্রাকৃতিক ভূগোলে আলোচনা করা হয়। বায়ুমণ্ডলীয় প্রক্রিয়া ও অবস্থা ভূপৃষ্ঠ সংলগ্ন আবহাওয়া ও জলবায়ুকে প্রভাবিত করে। এর মধ্যে ভূপৃষ্ঠের উপর ২০ কিলোমিটার পর্যন্ত বায়ুমণ্ডল সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। সুতরাং, ভূত্বকের নিচের কিছু অংশ, জল ও স্থলভাগসহ সমগ্র ভূপুৃষ্ঠ এবং এর উপরের প্রায় ২০ কিমি ব্যাপী বায়ুমণ্ডল এ আয়তনের অন্তর্ভুক্ত। বর্তমানে প্রাকৃতিক ভূগোলে স্থলভাগ বিস্তারিতভাবে পর্যালোচনা করা হয়। কারণ এটি হাতের কাছে এবং মানুষের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত। যাহোক, খাদ্য, খনিজ, জ্বালানি ইত্যাদির প্রধাণ উৎস এবং ভূপৃষ্ঠে পরিবহনের প্রধাণ মাধ্যম হিসেবে মহাসাগরগুলো ক্রমবর্ধমানহারে মনোযোগ আকর্ষণ করছে।   অশ্মমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল ও জীবমণ্ডলের প্রতিটি পদার্থ কিছুসংখ্যক উপাদান দ্বারা গঠিত। যেমন- বায়ুমণ্ডলকে আবহাওয়া ও জলবায়ুর প্রেক্ষিতে বিবেচনা করা হয়। শিলা, ভূমিরূপ, মৃত্তিকা ইত্যাদি অশ্মমণ্ডলের উপাদান। নদী, হ্রদ, হিমবাহ, বরফাবরণ, মহাসাগর ইত্যাদি বারিমণ্ডলের অংশ এবং উদ্ভিজ্জ ও প্রণী জীবমণ্ডলের অংশ (জেমস, এস. গার্ডনার, ১৯৭৭)।১০ প্রকৃতপক্ষে, বিভিন্ন উপাদানের সন্বেয়ে প্রাকৃতিক ভূগোলের অনেক প্রপঞ্চ (phenomenon/ক্রিয়া-প্রক্রিয়া) গঠিত হয়। প্রাকৃতিক ভূগোলে এরসব উপাদানগুলোর নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য দ্বারা পৃথিবীর বর্ণনা করা যায়। এগুলো সময়ে বা একস্থান থেকে অন্যস্থানে প্রায়শ পরিবর্তিত হয়ে থাকে। যেমন- তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বর্ষণ, বায়ুপ্রবাহ, বায়ুচাপ হচ্ছে বায়ুমণ্ডীয় চলরাশি বা সূচক, যা কোনো নির্দিষ্ট স্থানের ও সময়ের আবহাওয়া অবস্থা প্রকাশ করে। এদের প্রকৃতি এবং দীর্ঘ সময়কালে এগুলোর পরিবর্তন জলবায়ুর অবস্থা বর্ণনা করে। তাপমাত্রার হ্রাস-বৃদ্ধি, আর্দ্রতা, বায়ুচাপ, বায়ুপ্রবাহ, বর্ষণ ইত্যাদির হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটায়। এসব চলরাশি বা সূচক ভৌগোলিক পার্থক্য প্রদর্শন করে, একই সাথে এর দ্বারা জলবায়ু অঞ্চল নির্ধারণ করা যায় (আলম, ২০১৪)। যখন একটি চলরাশি বা সূচকের পরিবর্তন অপর একটি চলরাশি বা সূচকের পরিবর্তন ঘটায়, তখন উপাদানগুলোর মধ্যে মিথস্ক্রিয়া ঘটে।চলরাশি বা সূচক গুলো কীভাবে একে অপরের ওপর প্রভাববিস্তার করে তা জানা থাকলে প্রপঞ্চ (ক্রিয়া-প্রক্রিয়া) গুলোর পরিবর্তন ও ভৌগোলিক ব্যাখ্যা করা যায়। এরূপ মিথস্ক্রিয়া সাধারণত অনেক বেশি জটিল হয়ে থাকে। বাস্তবে অসংখ্য চলরাশি বা সূচক একসাথে মিথস্ক্রিয়া করে। সিস্টেমগুলো বিশ্লেষণের মাধ্যমে এ সম্পর্কগুলোকে মডেলরূপে তৈরি করার প্রয়াস চালানো হয়। প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রধাণ উদ্দেশ্য হচ্ছে ভূপৃষ্ঠ বা আয়তনকে বায়ুমণ্ডল, বারিমণ্ডল, অশ্মমণ্ডল, জীবমণ্ডল এবং মানুষের পারস্পরিক মিথস্কিয়াকে একটি পদ্ধতি (system) হিসেবে উপস্থাপন করা (জেমস, এস. গার্ডনার, ১৯৭৭). প্রাকৃতিক ভূগোলের আওতা বা পরিধি প্রাকৃতিক ভূগোলের প্রকৃতি বিশ্লেষণ করে বলা যায়, এতে অশ্মমণ্ডল, বারিমণ্ডল, বায়ুমণ্ডল ও জীবমণ্ডল- এ চারটি মণ্ডলের উপাদানগুলোর বৈশিষ্ট্য বিস্তারিতভাবে ও গুরুত্বের সাথে পর্যালোচনা করা হয়। উল্লেখিত চারটি উপাদান সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা লাভের জন্য পৃথিবীর উৎপত্তি, বয়স, ভূঅভ্যন্তরের গঠন এবং সমুদ্রের পর্যঙ্ক প্রভৃতির বৈশিষ্ট্যসমূহ সমীক্ষা করা হয়। ভূআলোড়নের অভ্যন্তরীণ ও বহিঃজ শক্তির অধ্যয়ন, উভয়বিধ শক্তির মিথস্ক্রিয়া এবং এদের ফলাফল সম্পর্কে সম্যক ধারণা প্রদান করে। পৃথিবীর অভ্যন্তরীণ শক্তি ভূপৃষ্ঠে বিভিন্ন ধরনের উঁচুনিচু ভূমিরূপের সৃষ্টি করে। পক্ষান্তরে, বায়ুমণ্ডল থেকে সৃষ্ট বহিঃজ শক্তি ভূপৃষ্ঠের উঁচু স্থানগুলোকে সমুদ্র সমতলে নামিয়ে আনার কাজে সবসময় ব্যস্ত থাকে। প্রাকৃতিক ভূগোলে ভূপৃষ্ঠের পর্বতমালা, ভাঁজ, চ্যুতি প্রভৃতি বন্ধুর ভূপ্রকৃতির উৎপত্তি, বৈশিষ্ট্য এবং বিস্তৃতি বিস্তারিতভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয়। আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাত, এদের বিস্তৃতি এবং অগ্ন্যুঃপাতের ফলে সৃষ্ট ভূমিরূপ ও বিপর্যয়, যা উদ্ভিদ ও প্রাণীর ওপর প্রভাববিস্তার করে সে সম্পর্কে ধারণা লাভ করা যায়। বহিঃজ শক্তির দ্বারা (বিচূর্ণীভবন, ক্ষয়ীভবন, নগ্নীভবন) সৃষ্ট ভূপৃষ্ঠের অবয়বগুলোর পর্যালোচনা থেকে ভূমিরূপ পদ্ধতি এবং এর কাজের ধরন (প্রবহমান জলরাশি, ভূগর্ভস্থ জল, সমুদ্র ঢেউ, বায়ুপ্রবাহ, হিমবাহ ইত্যাদি দ্বারা ক্ষয়, বহন ও সঞ্চয় কাজ) সম্পর্কে জানা যায় (আলম, ২০১৪)। বারিমণ্ডলের বৈশিষ্ট্যগুলোর পর্যালোচনায় সমুদ্র তলের বন্ধুরতা, সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা, লবণাক্ততা, সমুদ্রের সঞ্চয়, জোয়ার-ভাটা, সমুদ্র স্রোত, প্রবাল প্রাচীর, এটল ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। বায়ুমণ্ডলীয় উপাদানগুলোর পর্যালোচনায় বায়ুমণ্ডলের সংমিশ্রণ, গঠন, উপাদান, জলবায়ু ও আবহাওয়ার নিয়ামক, সৌরতাপ, সৌর বিচ্ছুরণ, তাপসমতা, ভূপৃষ্ঠের তাপ বিকিরণ, বায়ুর চাপ, বায়ুপ্রবাহ, বর্ষণ, বায়ুভর, বায়ুপুঞ্জ, ঘূর্ণিঝড়, জলবায়ু পরিবর্তন, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন, মৃত্তিকা ক্ষয় ও সঞ্চয়ন, পরিবেশ দূষণ, দুর্যোগ ও বিপর্যয় ইত্যাদি অন্তর্ভুক্ত করা হয়। উপরের আলোচনা থেকে বলা যায়, প্রাকৃতিক পরিবেশের ধারাবাহিক পর্যালোচনা একই সাথে মানুষ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের আন্তঃক্রিয়ার সম্পর্ক প্রাকৃতিক ভূগোলের সমীক্ষার বিষয়। নিম্নলিখিত কারণে প্রাকৃতিক ভূগোলের পদ্ধতি ও বিষয়বস্তুতে প্রধাণ পরিবর্তনগুলো সূচিত হয়ে থাকে : ১.  প্রাকৃতিক ভূগোল মানুষের কল্যাণে অধিকতর অর্থবহ ও প্রায়োগিক এবং মানবীয় ভূগোলের সাথে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। জ্ঞানের শাখা হিসেবে প্রাকৃতিক ভূগোল সংবদ্ধ এবং সমাজের সাথে অধিকতর সম্পর্কিত করার ইচ্ছা সর্বজনীন। ২. প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের প্রতি মানুষের অধিকতর মনোযোগ এবং প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে মানুষের বৈরী আচরণের ফলে পরিবেশগত ভরেসাম্য বিনষ্ঠ এবং প্রতিকারের উপায় অনুসন্ধান। ৩. বহিরাঙ্গন ও গবেষণাগারে যান্ত্রিকায়ন ও বিভিন্ন ভূমিরূপ পদ্ধতি পরিমাপের ক্রিয়াপদ্ধতি এবং উপাত্তসমূহের গাণিতিক বিশ্লেষণের প্রতি অধিকতর গুরুত্বারোপ। ৪. কতিপয় বিশেষ অবয়ব, যেমন- বাস্তুপদ্ধতি এবং বাস্তুতান্ত্রিক স্থিতিশীলতা ও অস্থিতিশীলতা, জলবিজ্ঞান, প্লেট টেকটোনিক্স ইত্যাদির প্রতি অধিকতর মনোযোগ দেওয়া। ৫. সাম্প্রতিক সময়ে ম্যাক্রো-টেম্পোরাল (macro-temporal) স্কেলের পরিবর্তে মাইক্রো-টেম্পোরাল (micro-temporal) স্কেল এবং বৃহৎ ম্যাক্রো-স্পেশিয়াল (macro-spatial) স্কেলের পরিবর্তে ক্ষুদ্র মাইক্রো-স্পেশিয়াল (micro-spatial) স্কেল; ভূমিরূপ ও পারিবেশিক (environmental) পদ্ধতির সমীক্ষায় সমাজের সাথে অধিক সম্পর্কযুক্ত পারিবেশিক সমস্যাসমূহ সমাধনের প্রতি অধিক গুরুত্বারোপের প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে (আলম, ২০১৪)। প্রাকৃতিক ভূগোলের শাখা ভূগোল অসংখ্য বৃহত্ উপশাখায় বিভক্ত, যাদের মধ্যে রয়েছে: {| style="border:1px solid #ddd; text-align:center; margin: auto;" cellspacing="15" | || || || |- | জীবভূগোল || আবহাওয়াবিদ্যা ও জলবায়ুবিদ্যা || উপকূলীয় ভূগোল || পরিবেশগত ব্যবস্থাপনা |- | || || || |- | গাণিতিক ভূগোল || ভূতত্ত্ববিদ্যা || হিমবাহবিদ্যা || জলবিদ্যা ও জলবিজ্ঞান |- | || || || |- | ভূস্থিত বাস্তুসংস্থান || সমুদ্রবিদ্যা || মৃত্তিকাবিদ্যা|| প্রত্নভূগোল |- | |- | কোয়াটার্নারি বিজ্ঞান |} মানবীয় ভূগোল মানবীয় ভূগোল হল ভূগোলের এমন একটি শাখা যা মানব সমাজের আকৃতিগত পদ্ধতি এবং প্রক্রিয়া নিয়ে আলোচনা করে। এতে মানুষ, তার রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, সামাজিক, এবং আর্থনৈতিক দিক নিয়ে পর্যালোচনাভূক্ত। মানবিক ভূগোলে পৃথিবীপৃষ্ঠে মানুষের বিভিন্ন কর্মকাণ্ডের বর্ণনা, স্থানিক পার্থক্য এবং এই পার্থক্যের পেছনে প্রাকৃতিক প্রভাবকের ভূমিকা পর্যালোচনা করা হয়। মানবীয় ভূগোলকে অনেকগুলো বিস্তৃত ভাগে ভাগ করা যায়, যেমন: {| style="border:1px solid #ddd; text-align:center; margin: auto;" cellspacing="15" | || || || |- |সাংস্কৃতিক ভূগোল || উন্নয়ন ভূগোল|| অর্থনৈতিক ভূগোল || স্বাস্থ্য ভূগোল |- | || || || |- | ঐতিহাসিক ভূগোল ও কালীক ভূগোল|| রাজনৈতিক ভূগোল ও ভৌগোলিকবিদ্যা|| জনসংখ্যা ভূগোল বা জনমিতি|| ধর্ম ভূগোল |- | || || || |- | সামাজিক ভূগোল || পরিবহন ভূগোল || পর্যটন ভূগোল|| নগর ভূগোল |} কালে কালে মানবীয় ভূগোল গবেষণা করার বিভিন্ন পন্থা উদ্ভাবিত হয়েছে এবং এর অন্তর্ভুক্ত পদ্ধতিগুলো হচ্ছে: আচরণিক ভূগোল নারীবাদী ভূগোল সংস্কৃতি তত্ত্ব ভূজ্ঞান শ্রম বিজ্ঞান মানচিত্র অংকনবিদ্যা প্রধান কয়েকজন ভূগোলবিদ এরাতোস্থেনেস বা এরাটোস্থেনিস (খ্রিস্টপূর্ব ২৭৬ - ১৯৪ অব্দ) : সর্বপ্রথম "ভূগোল" শব্দটি ব্যবহার করেন ও পৃথিবীর আয়তন নির্ণয় করেন। স্ট্রাবো (খ্রিষ্টপূর্ব ৬৪/৬৩ - খ্রিষ্টীয় ২৪ অব্দ) : ভূগোল বিষয়ক প্রথম বিশ্বকোষীয় গ্রন্থ "The Geographica" -এর লেখক। টলেমি (খ্রিস্টীয় ৯০ - ১৬৮ অব্দ) : "Geographia" নামক গ্রন্থে গ্রীক ও রোমানদের আহরিত জ্ঞানকে সুসঙ্গবদ্ধ করেন। আল-ইদ্রিসি (১১০০ - ১১৬৫/৬৬) : "নুজহাতুল মুসতাক" গ্রন্থের লেখক। জেরারডাস মারকেটর (১৫১২ - ১৫৯৪) : অন্যতম প্রধান মানচিত্র অঙ্কনবিদ ও "মার্কেটর অভিক্ষেপ"-এর প্রবর্তক। আলেকজান্ডার ফন হুমবোল্‌ড্‌ট্ (১৭৬৯ - ১৮৫৯) : আধুনিক ভূগোলের জনক বলে গন্য করা হয় ও "জীব-ভূগোল"-এর প্রবর্তক। কার্ল রিটার (১৭৭৯ – ১৮৫৯) : আধুনিক ভূগোলের জনক বলে গন্য করা হয় ও বার্লিন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভূগোল বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা। প্রকাশন African Geographical ReviewGeographical Review'' আরও দেখুন জীবভূগোল মানচিত্রাঙ্কনবিদ্যা জলবায়ুবিদ্যা সাংস্কৃতিক ভূগোল জনসংখ্যাতত্ত্ব অর্থনৈতিক ভূগোল ভূগণিত ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা ভূমিরূপবিদ্যা হিমবিদ্যা জিপিএস ঐতিহাসিক ভূগোল জলবিজ্ঞান ভূদৃশ্য বাস্তুশাস্ত্র সমুদ্রবিজ্ঞান প্রত্নভূগোল প্রাকৃতিক মৃত্তিকাবিজ্ঞান গ্রহসম্পর্কীয় বিজ্ঞান দূর অনুধাবন পরিবহন ভূগোল নগর ভূগোল তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ ভূগোল মূল বিষয়ের নিবন্ধ ভূবিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞান
https://en.wikipedia.org/wiki/Geography
Geography
Geography (from Ancient Greek γεωγραφία geōgraphía; combining gê 'Earth' and gráphō 'write') is the study of the lands, features, inhabitants, and phenomena of Earth. Geography is an all-encompassing discipline that seeks an understanding of Earth and its human and natural complexities—not merely where objects are, but also how they have changed and come to be. While geography is specific to Earth, many concepts can be applied more broadly to other celestial bodies in the field of planetary science. Geography has been called "a bridge between natural science and social science disciplines." Origins of many of the concepts in geography can be traced to Greek Eratosthenes of Cyrene, who may have coined the term "geographia" (c. 276 BC – c. 195/194 BC). The first recorded use of the word γεωγραφία was as the title of a book by Greek scholar Claudius Ptolemy (100 – 170 AD). This work created the so-called "Ptolemaic tradition" of geography, which included "Ptolemaic cartographic theory." However, the concepts of geography (such as cartography) date back to the earliest attempts to understand the world spatially, with the earliest example of an attempted world map dating to the 9th century BCE in ancient Babylon. The history of geography as a discipline spans cultures and millennia, being independently developed by multiple groups, and cross-pollinated by trade between these groups. The core concepts of geography consistent between all approaches are a focus on space, place, time, and scale. Today, geography is an extremely broad discipline with multiple approaches and modalities. There have been multiple attempts to organize the discipline, including the four traditions of geography, and into branches. Techniques employed can generally be broken down into quantitative and qualitative approaches, with many studies taking mixed-methods approaches. Common techniques include cartography, remote sensing, interviews, and surveying.
1225
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%9C
সমাজ
সমাজ বলতে মূলত এমন এক ব্যবস্থা বোঝায়, যেখানে একাধিক চরিত্র একত্রে কিছু নিয়ম-কানুন প্রতিষ্ঠা করে একত্রে বসবাসের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলে। মানুষের ক্ষেত্রে একাধিক ব্যক্তি একত্র হয়ে লিখিত কিংবা অলিখিত নিয়ম-কানুন তৈরি করে; এরকম একত্র বসবাসের অবস্থাকে সমাজ বলে। মানুষ ছাড়াও ইতর প্রাণীর ক্ষেত্রে সমাজের অস্তিত্ব দেখা যায়, তবে সেখানে মানুষের মতো কাঠামোবদ্ধ সমাজের দৃষ্টান্ত নজরে আসে না। সমাজের দুটো গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো:ট্যাবু বা নিষিদ্ধ আচার, ও টোট্যাম। সমাজের মধ্যে যেমন সদস্যদের মধ্যে থাকে পরস্পর সৌহার্দ্য, সহযোগিতা, মমত্ব ; তেমনি তৈরি হতে পারে ঘৃণা, লোভ, জিঘাংসা। তাই সমাজের মধ্যে শৃংখলা ধরে রাখার স্বার্থে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অলিখিতভাবে তৈরি হয় কিছু নিয়ম, অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যার লঙ্ঘন চরম অসম্মানজনক এবং সমাজের দৃষ্টিতে শাস্তিযোগ্য। তবে, নিঃসন্দেহে সুন্দর ও সুষ্ঠু সমাজ ব্যবস্থার জন্য সৌহার্দ্য, সহযোগিতা একান্ত দরকার। ব্যুৎপত্তি এবং ব্যবহার ইংরেজি "society" শব্দটি দ্বাদশ শতাব্দীর ফরাসি শব্দ société থেকে এসেছে যার অর্থ 'সঙ্গ'। এটি পালাক্রমে ল্যাটিন শব্দ societas থেকে এবং পরবর্তীতে বিশেষ্য socius (" কমরেড, বন্ধু, মিত্র"; বিশেষণ socialis ) থেকে উদ্ভূত হয়েছিল। শব্দটি নাগরিকদের মধ্যে একপ্রকার বন্ধন বা বন্ধুত্বপূর্ণ মিথস্ক্রিয়া বোঝাতে ব্যবহৃত হতো। সমাজ শব্দটি সমগ্র মানবতাকে নির্দেশ করতে পারে (এছাড়াও: "সাধারণভাবে সমাজ", " মুক্ত সমাজ" ইত্যাদি নির্দেশ করে)। যদিও এই অর্থে যারা সমাজের বাকি অংশের প্রতি অবন্ধুসুলভ বা অসভ্য তাদের অসামাজিক " মনে করা হয়। ১৬৩০-এর দশকে, শব্দটি "প্রতিবেশী ও সম্পর্কে আবদ্ধ এবং একটি সুশৃঙ্খল সম্প্রদায়ে একসাথে বসবাস সম্পর্কে সচেতন ব্যক্তিদের" বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছিল। কিন্তু, ১৮ শতকে স্কটিশ অর্থনীতিবিদ অ্যাডাম স্মিথ পরামর্শ দেন যে একটি সমাজ "বিভিন্ন মানুষ, বিভিন্ন ব্যবসায়ীর মধ্যে, কোনও পারস্পরিক ভালোবাসা বা স্নেহ ছাড়াই তার উপযোগিতা বোধ থেকে টিকে থাকতে পারে, যদি তারা একে অপরের ক্ষতি করা থেকে বিরত থাকে। " আরও দেখুন সুশীল সমাজ ভোগবাদ সম্প্রদায় সংস্কৃতি পরিবার ধর্ম বিদ্বৎসমাজ সমাজবিজ্ঞান সামাজিক চুক্তি তত্ত্ব সামাজিক কাঠামো সমাজকর্ম তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সমাজ সামাজিক বিজ্ঞান রাজনৈতিক দর্শন সংগঠনের প্রকারভেদ মূল বিষয়ের নিবন্ধ মানুষ
https://en.wikipedia.org/wiki/Society
Society
A society () is a group of individuals involved in persistent social interaction or a large social group sharing the same spatial or social territory, typically subject to the same political authority and dominant cultural expectations. Societies are characterized by patterns of relationships (social relations) between individuals who share a distinctive culture and institutions; a given society may be described as the sum total of such relationships among its constituent members. Human social structures are complex and highly cooperative, featuring the specialization of labor via social roles. Societies construct roles and other patterns of behavior by deeming certain actions or concepts acceptable or unacceptable—these expectations around behavior within a given society are known as societal norms. So far as it is collaborative, a society can enable its members to benefit in ways that would otherwise be difficult on an individual basis. Societies vary based on level of technology and type of economic activity. Larger societies with larger food surpluses often exhibit stratification or dominance patterns. Societies can have many different forms of government, various ways of understanding kinship, and different gender roles. Human behavior varies immensely between different societies; humans shape society, but society in turn shapes human beings.
1226
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A6%BF
প্রকৃতি
প্রকৃতি (ইংরেজি : Nature) বলতে এই পৃথিবী তথা সমগ্র সৃষ্টিকে নির্দেশ করে। প্রকৃতি বলতে জাগতিক বিশ্বের মানব সৃষ্ট-নয় এমন দৃশ্য-অদৃশ্য বিষয় এবং জীবন ও প্রাণকে বুঝায়। অন্য অর্থে প্রকৃতি বলতে বৈশিষ্ট্যকেও বুঝায়। যেমন: মানব প্রকৃতি (মানুষের বৈশিষ্ট্য)। আগেই বলা হয়েছে প্রকৃতি বলতে স্বয়ং স্রষ্টা সৃষ্ট বিশ্বজগত যার মধ্যে মানুষ একটি উপাদান মাত্র; গাছ-পালা , নদী-নালা , পশু-পাখি , পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি সকল বস্তুর‌ মত। তথ্যসূত্র প্রকৃতি পরিবেশ বিজ্ঞান মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Nature
Nature
Nature is an inherent character or constitution, particularly of the ecosphere or the universe as a whole. In this general sense nature refers to the laws, elements and phenomena of the physical world, including life. Although humans are part of nature, human activity or humans as a whole are often described as at times at odds, or outright separate and even superior to nature. During the advent of modern scientific method in the last several centuries, nature became the passive reality, organized and moved by divine laws. With the Industrial Revolution, nature increasingly became seen as the part of reality deprived from intentional intervention: it was hence considered as sacred by some traditions (Rousseau, American transcendentalism) or a mere decorum for divine providence or human history (Hegel, Marx). However, a vitalist vision of nature, closer to the pre-Socratic one, got reborn at the same time, especially after Charles Darwin. Within the various uses of the word today, "nature" often refers to geology and wildlife. Nature can refer to the general realm of living beings, and in some cases to the processes associated with inanimate objects—the way that particular types of things exist and change of their own accord, such as the weather and geology of the Earth. It is often taken to mean the "natural environment" or wilderness—wild animals, rocks, forest, and in general those things that have not been substantially altered by human intervention, or which persist despite human intervention. For example, manufactured objects and human interaction generally are not considered part of nature, unless qualified as, for example, "human nature" or "the whole of nature". This more traditional concept of natural things that can still be found today implies a distinction between the natural and the artificial, with the artificial being understood as that which has been brought into being by a human consciousness or a human mind. Depending on the particular context, the term "natural" might also be distinguished from the unnatural or the supernatural.
1227
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF
প্রযুক্তি
প্রযুক্তি হল  কৌশল, দক্ষতা, পদ্ধতি ও প্রক্রিয়া-সমষ্টি, যা পণ্য ও সেবা উৎপাদনে বা উদ্দেশ্য সাধনে ব্যবহৃত হয়; যেমন: বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান। প্রযুক্তি হতে পারে কৌশল ও প্রক্রিয়ার জ্ঞান বা এটি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে শুধুমাত্র যন্ত্রের ধারণা যে, এটি কীভাবে পরিচালিত হয় এগুলো সম্পর্কে বিশদ জ্ঞান ব্যতীত। কৌশল, ( অর্থাৎ মেশিন বা যন্ত্র) যা প্রযুক্তির ইনপুট ব্যবহার নিয়ে ১টি আউটপুট ফলে পরিণত করে তাকে প্রযুক্তি কৌশল বা প্রযুক্তিগত কৌশল বলে। প্রযুক্তির সরলতম রূপ হল মৌলিক সরঞ্জামের বিকাশ ও ব্যবহার। প্রাগৈতিহাসিক কালে আগুন নিয়ন্ত্রণের আবিষ্কার ও পরবর্তীকালে নব্যপ্রস্তর যুগীয় বিপ্লব খাদ্যের উৎসের বৃদ্ধি করেছে এবং চাকার আবিষ্কার মানুষকে এই পরিবেশে পরিভ্রমণ ও নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করেছে।  ক্রমে ক্রমে ছাপাখানা, টেলিফোন, মোবাইল, কম্পিউটার ও ইন্টারনেটের আবিষ্কার যোগাযোগ ক্ষেত্রে মানুষের শারীরিক বাঁধাকে  দূর করেছে এবং মানুষকে বৈশ্বিক পরিমণ্ডলে মুক্তভাবে যোগাযোগে সক্ষম করেছে। প্রযুক্তির অনেক প্রভাব রয়েছে। এটি  অধিক সমৃদ্ধ অর্থনীতি বিকাশে সাহায্য করেছে (বর্তমানের বৈশ্বিক অর্থনীতি সহ) এবং যার ফলে বিলাসী সম্প্রদায়ের উদ্ভব হয়েছে।অনেক প্রযুক্তিগত প্রক্রিয়ায় অনাকাঙ্ক্ষিত উপজাত উৎপন্ন হয় যা দূষণ হিসেবে পরিচিত এবং যা প্রাকৃতিক সম্পদের অবনতির মাধ্যমে পৃথিবীর পরিবেশের ক্ষতি করে। উদ্ভাবন  সর্বদাই সমাজের মূল্যবোধকে প্রভাবিত করে ও  সাথে সাথে  প্রযুক্তির শিষ্টাচার নিয়ে নতুন প্রশ্ন উত্থাপিত হয়।উদাহরণের মধ্যে রয়েছে দক্ষতার ভিত্তিতে খ্যাতির নির্ধারণ জৈব শিষ্টাচার কে বাধাগ্রস্ত করে। প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে দার্শনিক যুক্তি তর্ক  এখনো একমত নয় যে এটি মানুষের পরিস্থিতির উন্নতি করেছে নাকি অবনতি করছে। নব্য-লুডিজম, অ্যানার্কো-আদিমবাদ এবং অনুরূপ প্রতিক্রিয়াশীল আন্দোলন প্রযুক্তির বিস্তারকে সমালোচনা করে যুক্তি দেন যে এটি মানুষের ক্ষতি করে। অন্যদিকে টেকনো-প্রগতিবাদ মতামতের সমর্থকরা প্রযুক্তিকে সমাজের পক্ষে উপকারী মনে করেন। প্রযুক্তি বলতে কোন একটি প্রজাতির বিভিন্ন যন্ত্র এবং প্রাকৃতিক উপাদান প্রয়োগের ব্যবহারিক জ্ঞানকে বোঝায়। নিজের প্রাকৃতিক পরিবেশের সাথে প্রজাতিটি কেমন খাপ খাওয়াতে পারছে এবং তাকে কীভাবে ব্যবহার করছে তাও নির্ধারণ করে প্রযুক্তি। মানব সমাজে প্রযুক্তি হল বিজ্ঞান এবং প্রকৌশলের একটি আবশ্যিক ফলাফল। অবশ্য অনেক প্রাযুক্তিক উদ্ভাবন থেকেই আবার বিজ্ঞান ও প্রকৌশলের অনেক জ্ঞানের ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছে। মানব সমাজের প্রেক্ষিতে প্রযুক্তির সংজ্ঞায় বলা যায়, "প্রযুক্তি হল কিছু প্রায়োগিক কৌশল যা মানুষ তার প্রতিবেশের উন্নয়নকার্যে ব্যবহার করে।" যেকোন যন্ত্র এবং প্রাকৃতিক উপাদান সম্বন্ধে জ্ঞান এবং তা দক্ষভাবে ব্যবহারের ক্ষমতারকেও প্রযুক্তি বলা হয়। আমরা যে পৃথিবী তে বাস করি তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্যই আমরা প্রযুক্তি ব্যবহার করি। প্রযুক্তি হল জ্ঞান, যন্ত্র এবং তন্ত্রের ব্যবহার কৌশল যা আমরা আমাদের জীবন সহজ করার স্বার্থে ব্যবহার করছি। সংজ্ঞা ও ব্যবহার ‘প্রযুক্তি’ শব্দটির ব্যবহার গত ২০০ বছরের তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে পরিবর্তিত হয়েছে। বিংশ শতাব্দীর আগে এই শব্দটি ইংরেজিতে অপরিচিত ছিল যা সাধারণত কখনো কখনো প্রয়োজনীয় কলারব্যাখ্যা দিতে ব্যবহৃত হতো আবার কখনো কখনো ম্যাসাচুসেট্স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এর কৌশলগত বিদ্যাকে বোঝানো হতো (১৮৬১ সালে তালিকাভুক্ত)। ‘প্রযুক্তি’ শব্দটি প্রাধান্য পায় দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের সান্নিধ্যের মাধ্যমে।এই শব্দটির অর্থ বিংশ শতাব্দীতে পরিবর্তিত হয় যখন থর্স্টেইন ভেবলেন থেকে শুরু করে আমেরিকান সমাজবিজ্ঞানীরা জার্মান Technik থেকে ‘প্রযুক্তি’  এর অনুবাদ করা শুরু করেন। জার্মান ও ইউরোপীয় ভাষায় technik এবং technologie দুটি শব্দ ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করে কিন্তু ইংরেজিতে এ  দুটিকেই একই অর্থে ‘Technology’ তে অনুবাদ করা হয়েছে। ১৯৩০ এর দশকে প্রযুক্তি  কেবল ইন্ডাস্ট্রিয়াল শিল্পের মধ্যে সীমাবদ্ধ থাকে নি। ১৯৩৭ সালে মার্কিন সমাজবিজ্ঞানী রেড বাইন লিখেছিলেন ‘ প্রযুক্তি অন্তর্ভুক্ত করে সমস্ত মেশিন, সরঞ্জাম, যন্ত্রপাতি এবং যোগাযোগ ও পরিবহনের ডিভাইস ও দক্ষতা যা আমরা তৈরি  এবং ব্যবহার করি। বাইন এর সংজ্ঞা আজ ও পরিচিত বিশেষ করে সমাজ বিজ্ঞানীদের কাছে। বিজ্ঞানী ও প্রকৌশলীরা যেকোনো কিছু তৈরি ও ব্যবহার কে প্রযুক্তির সংজ্ঞা দেওয়ার চাইতে এটিকে ফলিত বিজ্ঞান হিসেবে বিবেচনা করতে অধিক আগ্রহী। সম্প্রতি বিভিন্ন যান্ত্রিক কারণে অনেক বিজ্ঞানীরা ইউরোপীয় দার্শনিকদের চিন্তা ধারাকে বিবেচনা করেন প্রযুক্তিকে বিশ্লেষণ করতে  যেমন করা হয়েছে ফোকল্টসের টেকনোলজিস অফ দ্যা সেলফ। অভিধান ও বিজ্ঞানীরা বিভিন্ন ধরনের সংজ্ঞা দিয়ে থাকেন। মেরিয়ামিয়াম-ওয়েস্টার লার্নার্স ডিকশনারি বিষয়টির এইরকম সংজ্ঞা প্রদান করে ‘প্রযুক্তি হল শিল্প ও প্রকৌশল ক্ষেত্রে বিজ্ঞানের ব্যবহার যা প্রয়োজনীয় জিনিস আবিষ্কার ও সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়’ এবং ‘মেশিন বা সরঞ্জাম হল প্রযুক্তির তৈরি ফলাফল’। উরসুলা ফ্রাঙ্কলিন ১৯৮৯ সালে তাঁর ‘রিয়েল ওয়ার্ল্ড অফ টেকনোলজি’ লেকচারে  এই ধারণাটির অন্য একটি সংজ্ঞা দিয়েছেন ‘ এটি হলো আমরা চারপাশের কাজ কীভাবে করি তার কৌশল। এটি প্রায়শই ইলেকট্রনিক্স টেকনোলজি বা উচ্চতর প্রযুক্তিকে বুঝায়’। বার্নার্ড স্টিলগার ‘প্রযুক্তি ও সময়-১’ প্রযুক্তিকে দুইভাবে সংজ্ঞায়িত করেছেন যেমন -  ‘জৈবিক উপায় ছাড়া জৈবিক কার্য সাধন’ এবং ‘সুসংহত অজৈব পদার্থ’ হিসেবে। বিস্তর পরিসরে প্রযুক্তি  হল মানসিক ও শারীরিক প্রচেষ্টার মাধ্যমে সৃষ্ট বস্তুগত ও অবস্তুগত জিনিস বা মাধ্যম  যার মাধ্যমে কোনো মূল্য অর্জন করা হয়। এই দৃষ্টিকোণ থেকে প্রযুক্তি হল যন্ত্র ও সরঞ্জাম যা বাস্তব জীবনের সমস্যা সমাধানে ব্যবহৃত হয়। এটি একটি সুদূরপ্রসারি ধারণা যা সরল যন্ত্র যেমন চামচ থেকে শুরু করে অনেক জটিল যন্ত্র যেমন মহাশূন্য স্টেশন ইত্যাদি কে অন্তর্ভুক্ত করে। যন্ত্র ও সরঞ্জাম কেবল বস্তুই হতে হবে তা নয় যেমন কম্পিউটার সফটওয়্যার ও ব্যবসার পদ্ধতি এগুলো প্রযুক্তির সংজ্ঞার মধ্যে পড়ে। ডব্লিউ ব্রায়ান আর্থার একইভাবে বিস্তর পরিসরে প্রযুক্তিকে সংজ্ঞায়িত করেন, ‘একটি পদ্ধতি হিসেবে যা মানুষের উদ্দেশ্য পূরণ করে’। প্রযুক্তির শব্দটি বিভিন্ন কৌশলের সংগ্রহকে ও বুঝাতে ব্যবহৃত হয়। এই পাঠ্য অংশে মানবিক জ্ঞানের প্রচলিত ধারণা উৎসগুলোকে সমন্বিত করে কাঙ্ক্ষিত জিনিস তৈরি, সমস্যা সমাধান, চাহিদা পূরণ করা হয় তা প্রযুক্তি, পদ্ধতি ও এর কাঁচামাল ব্যবহার করে।যখন এটি ‘চিকিৎসা প্রযুক্তি’ ও ‘মহাশূন্য প্রযুক্তি’ এর সাথে জড়িত হয় তখন এটি সেই ক্ষেত্রের সরঞ্জামও জ্ঞানকে বুঝায়। ‘কলা প্রযুক্তি’ মানবিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত উন্নত প্রযুক্তিকে বুঝায়। প্রযুক্তিকে সমাজ পরিবর্তনের কার্যক্রম হিসেবে উল্লেখ করা যায়। তাছাড়া প্রযুক্তি হল গণিত, বিজ্ঞান ও কলার প্রয়োগ যা জীবনে উপকারে আসে। এর আধুনিক উদাহরণ হল যোগাযোগ প্রযুক্তির উদ্ভব যার মাধ্যমে মানুষের মধ্যকার শারীরিক মিথস্ক্রিয়ার বাধাকে অতিক্রম করে একটি নতুন সংস্কৃতি সাইবার সংস্কৃতির নামে আবির্ভূত হয়েছে যার ভিত্তি হলো কম্পিউটার ও ইন্টারনেট। একটি সাংস্কৃতিক কার্যক্রম হিসেবে প্রযুক্তি বিজ্ঞান ও প্রকৌশল কে নির্দেশিত করে কারণ এদের প্রত্যেকটি প্রযুক্তিগত প্রচেষ্টার ধারণা উদ্ভব করে। বিজ্ঞান, প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বর্তমানে আমরা বিভিন্ন প্রযুক্তি যেমন  বই, কলম, টেবিল, বৈদ্যুতিক বাতি, ঘড়ি ইত্যাদি ব্যবহার করে লেখাপড়া করছি। বৈজ্ঞানিক জ্ঞান ব্যবহার করে এ সকল প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা হয়েছে । বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য কী? এদের মধ্যে কী সম্পর্ক রয়েছে? বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পার্থক্য বিজ্ঞান হলো প্রকৃতি সম্পর্কিত জ্ঞান যা পর্যবেক্ষণ ও পরীক্ষা-নিরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রাকৃতিক ঘটনাকে ব্যাখ্যা ও বর্ণনা করে। প্রাকৃতিক ঘটনা সম্পর্কিত বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে  বিজ্ঞানীরা বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি অনুসরণ  করেন। যার মধ্যে নিম্নোক্ত  ধাপগুলো রয়েছে। প্রযুক্তি হল আমাদের জীবনের বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য বিজ্ঞানের ব্যবহারিক প্রয়োগ।প্রযুক্তি মানুষের জীবনের মান উন্নয়নে বিভিন্ন পণ্য, যন্ত্রপাতি ও পদ্ধতির উদ্ভাবন করে। যেমন - বিজ্ঞানীরা বিদ্যুৎ নিয়ে গবেষণা করে এ বিষয়ে আমাদের ধারণা বা জ্ঞান সৃষ্টি করেছেন। এই বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আবার ফ্রিজ, টেলিভিশন, মোবাইল এবং বৈদ্যুতিক বাতি উদ্ভাবনে কাজে লাগানো হয়েছে।প্রযুক্তি ব্যবহারের নানান ক্ষেত্র রয়েছে। যেমন - শিক্ষা, চিকিৎসা, যোগাযোগ, যাতায়াত ইত্যাদি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সম্পর্ক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি উদ্দেশ্য ভিন্ন হলেও আমাদের জীবনে  এদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এরা পরস্পরের সাথে  নিবিড় ভাবে সম্পর্কিত। অতীতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির মধ্যে এত নিবিড় সম্পর্ক ছিল না। বিজ্ঞানীরা প্রকৃতি নিয়ে গবেষণা করেছেন এবং বিভিন্ন ঘটনার ব্যাখ্যা দিয়েছেন। সেখানে ব্যবহারিক জীবনের সমস্যা সমাধানের কোনো উদ্দেশ্যে  ছিল না। তারা বিদ্যুৎ ও আলোর মত বৈজ্ঞানিক জ্ঞান আবিষ্কার করেছেন। অপরদিকে জীবনকে উন্নত করার লক্ষ্যে বাস্তব সমস্যা সমাধানের জন্য মানুষ প্রযুক্তির উদ্ভাবন করেছে।তারা পাথরের হাতিয়ার, আগুন, পোশাক, ধাতব যন্ত্রপাতি এবং চাকার মত সরল প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছে। আঠারো শতকে শিল্প বিপ্লবের সময়কালে প্রযুক্তির ব্যাপক উন্নয়ন সাধিত হয়েছে। বিশেষ করে কৃষি, শিল্প-কারখানা, পরিবহন ইত্যাদি ক্ষেত্রে। বিজ্ঞানীদের আবিষ্কৃত জলীয় বাষ্পের ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে মানুষ বাষ্পীয় ইঞ্জিন আবিষ্কার করেছে। এই বাষ্পীয় ইঞ্জিন  কল-কারখানা রেল গাড়ি  এবং জাহাজ চালাতে ব্যবহার করা হতো। বিভিন্ন প্রশ্ন ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনে মানুষ বৈজ্ঞানিক জ্ঞান  ব্যবহার করে থাকে। বিজ্ঞানীরা প্রকৃতি নিয়ে  গবেষণার সময়ও প্রযুক্তির ব্যবহার করে থাকেন। যেমন - দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে বিজ্ঞানীরা মহাকাশের    বিভিন্ন বস্তু পর্যবেক্ষণ করতে সক্ষম হয়েছেন। খালি চোখে দেখা যায় না এমন জিনিস অনুসন্ধানে  বিজ্ঞানীরা অণুবীক্ষণ যন্ত্র ব্যবহার করে থাকেন। বর্তমানকালে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি একে অপরের উপর নির্ভরশীল। প্রযুক্তি ও প্রকৌশল বিজ্ঞান, প্রকৌশল এবং প্রযুক্তির মধ্যে পার্থক্য সর্বদা পরিষ্কার হয় না। বিজ্ঞান হল পর্যবেক্ষণ এবং পরীক্ষার মাধ্যমে প্রাপ্ত প্রাকৃতিক জগতের নিয়মতান্ত্রিক জ্ঞান। প্রকৌশল হল প্রায়শই (তবে সর্বদা নয়) বিজ্ঞানের ফলাফল এবং কৌশল গুলো ব্যবহার করে ব্যবহারিক মানবিক উপায়ে প্রাকৃতিক ঘটনাকে কাজে লাগানোর জন্য সরঞ্জামগুলি এবং সিস্টেমগুলি ডিজাইন এবং তৈরির লক্ষ্য-ভিত্তিক প্রক্রিয়া।প্রযুক্তি প্রায়শই বিজ্ঞান এবং প্রকৌশলের পরিণতি হয়। প্রযুক্তি জীবন চক্র প্রযুক্তির জীবনচক্র (টিএলসি) একটি পণ্যের প্রযুক্তিগত উন্নয়নের পর্ব থেকে বাজারের পরিপক্কতা পর্যন্ত অবশেষে  পতন পর্যন্ত ব্যয় এবং লাভের বর্ণনা দেয়। গবেষণা ও  উন্নয়নের (আরএন্ডডি) ব্যয়গুলো একবার পণ্য বাজারে আসার পরে অবশ্যই লাভ দ্বারা ভারসাম্য করতে হয়।  প্রযুক্তির জীবনচক্র মূলত উন্নয়নের ব্যয়  এবং এর থেকে  সম্ভাব্য লাভ এর মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে আলোচনা করে। প্রযুক্তির জীবন চক্রের চারটি পর্যায় রয়েছে। পাশের চিত্রে এটি বোঝা যাচ্ছে। ধাপ চারটি হচ্ছে - গবেষণা ও উন্নয়ন (আরএন্ডডি) - এই পর্যায়ে প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের জন্য বিনিয়োগের ঝুঁকি নেওয়া হয় ।সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান গুলো গবেষণা ও উন্নয়নে কৌশলগত দিক নির্দেশনার মাধ্যমে ধীরে ধীরে  একটি প্রযুক্তির  পরীক্ষামূলক সংস্করণে  পৌঁছায়। সমুত্থান ও বাণিজ্যিকীকরণ - এই পর্বে পণ্য আবিষ্কার থেকে সম্পূর্ণরূপে ব্যয় পুনরুদ্ধার করা সময়সীমার অন্তর্ভুক্ত।এই পর্যায়ে  আবিষ্কারের দ্রুত বৃদ্ধি ও বণ্টন দেখা যায় এবং নতুন ও অধিক কার্যকরী পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক সুবিধার  দ্বার উন্মোচিত হয়। ব্যাপন ও পরিপক্কতা - যেহেতু জনসাধারণ নতুন উদ্ভাবন গ্রহণ করে  তাই প্রতিযোগিরা বাজারে প্রবেশ করে এবং জোগান চাহিদাকে অতিক্রম করতে শুরু করে। এই পর্যায়ে, ধারণাটি স্বাভাবিক হওয়ার সাথে সাথে বিনিময় ধীর হতে শুরু করে। পতন ও প্রতিকল্পন - চূড়ান্ত পর্যায়ে  যখন পণ্য সুবিধা ও  সম্ভাব্য মূল্য  নিয়ন্ত্রিত হয় তখন উৎপাদন ও বিক্রয়  কমতে থাকে। এই হ্রাস একসময় পতনে পৌঁছে যায়। তখন সংস্থাগুলো নতুন  উদ্ভাবনের দিকে অগ্রসর হয়। প্রযুক্তির ক্ষেত্রসমূহ বায়বান্তরীক্ষ প্রযুক্তি: মহাকাশ অভিযানের জন্য ক্ষুদ্র এবং বৃহৎ যান তৈরি এবং চালনা। নভোযান উৎক্ষেপণ, উচ্চ গতি সম্পন্ন আকাশযান, বিমান , নভোযান নির্দেশনার জন্য ব্যবহৃত ভূ-কেন্দ্রিক উপকরণসময় তৈরি এই প্রযুক্তির কাজ। ভৌগোলিক যোগাযোগ এবং তথ্য চালনা পদ্ধতি এখান থেকেই উন্নয়ন লাভ করে। কৃষি প্রযুক্তি: এই প্রযুক্তির মাধ্যমে প্রথাগত ট্রাক্টর এবং চাষের অন্যান্য যন্ত্রপাতির সাথে আধুনিক ল্যাপটপ এবং গ্লোবাল পজিশনিং সিস্টেম-এর সমন্বয় ঘটায়। খাদ্য উৎপাদনের প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় তলিয়ে দেখা এবং উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধিই এর মূল কাজ। জৈব প্রযুক্তি: এটি জীবনের মূল উপাদান এবং একক যেমন, কোষ, জিন এবং ব্যাক্টেরিয়া নিয়ে অধ্যয়ন করে । এর মাধ্যমে  নতুন খাদ্য এবং ওষুধ,  মানুষের জিনের নকশা  ইত্যাদি তৈরি করা হয়  যাতে রোগ প্রতিরোধ  এবং জৈবিক ঝুঁকি নির্ণয় করা যায়। নির্মাণ প্রযুক্তি: নির্মাণ প্রযুক্তি পৌর প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি কে একত্র করে বসবাসের এবং কাজের নিরাপদ পরিবেশ তৈরি, পরিকল্পনা এবং ব্যবস্থাপনা করে।এটি দালানকোঠা, রাস্তাঘাট, জন-পরিবহন ব্যবস্থা, টানেল, পানি পরিশোধন,  ব্রিজ ইত্যাদির ডিজাইন এবং নির্মাণ নিয়ে কাজ করে। প্রকৌশল প্রযুক্তি: ইলেকট্রনিক্স এবং বলবিদ্যা থেকে শুরু করে জেট ইঞ্জিন  এবং আকাশযান পর্যন্ত প্রকৌশল প্রযুক্তি সমস্ত কিছু তৈরি করে যা আমাদের পৃথিবীকে চালায়। এই বিস্তারিত ক্ষেত্র বস্তু কীভাবে কাজ করে তা বুঝার জন্য এর বিশেষত্ব সহ গণিত, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তির নীতি গুলো কাজে  লাগায়। পরিবেশগত প্রযুক্তি: পরিবেশগত প্রযুক্তি আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন, বায়ুর গুনাগুন এবং প্রাকৃতিক সম্পদের নির্ভরযোগ্যতা বুঝতে সক্ষম করেছে।পরিবেশের উপর মানুষের ক্রিয়া-কলাপ এর প্রভাব ও শক্তির নবায়নযোগ্য উৎস এর সঠিক ব্যবহার পরিদর্শন এবং বুঝতে এই প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। ভৌগোলিক তথ্য ব্যবস্থা: জিআইএস এবং জিপিএস রক্ষণশীল নকশা প্রযুক্তিকে আমাদের হাতের মুঠোয় নিয়ে এসেছে। জিপিএস বিভিন্ন স্থানের অবস্থান নির্ণয় ও পরিভ্রমণ করতে ভূগোল এবং কৃত্রিম উপগ্রহ  প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এর অনুষাঙ্গিক প্রযুক্তি  জিআইএস কম্পিউটার থেকে উৎপন্ন স্থল ও জল পরিবেশের নকশা তৈরি করে যা অন্য কোন  বিকল্প উপায়ে করা সম্ভব নয়। তথ্য প্রযুক্তি: তথ্য প্রযুক্তি  (আইটি) হলো আজকের কম্পিউটারাইজড ও  ওয়্যারলেস  দুনিয়ার কেন্দ্র যার মধ্যে আমরা বসবাস করি।এটির যেমন একটি ইন্ডাস্ট্রি  হিসেবে ইলেকট্রনিক্স  তত্ত্বের  সমন্বয়ে কম্পিউটার হার্ডওয়্যার ও সফটওয়্যার তৈরি করছে  তেমনি একটি প্রযুক্তি হিসেবে বর্তমানে অন্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রগুলোকে   সচল  করছে। আইটি যেকোনো ধরনের তথ্য তৈরি,  জমা ও আদান প্রদানে ব্যবহৃত হয় যেমন - বিজনেস ডাটা, ভয়েস কমিউনিকেশন, ফটোগ্রাফি ও গ্রাফিক্স ইত্যাদি। উৎপাদন প্রযুক্তি: আমরা যে খাদ্য খাই, যে গাড়ি চালাই, যে কম্পিউটার ও ওষুধ ব্যবহার করি ওদের জীবন নিরাপদ ও সহজ করার জন্য  এই সমস্ত কিছু একটি সুনির্দিষ্ট উৎপাদন প্রক্রিয়ার ফলাফল।উৎপাদন প্রযুক্তি কম্পিউটার ও অর্ধপরিবাহী এবং এদের উপাংশ  তৈরি করে। এটি যান্ত্রিক এবং প্রযুক্তিগত দক্ষতা কাজে লাগিয়ে যন্ত্র ও উৎপাদন ব্যবস্থা তৈরি করে। নৌ প্রযুক্তি: নৌ প্রযুক্তি বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও প্রকৌশল কে সমন্বয় করে  পানির নিচের  জগতে বিচরণ  করে।নৌ প্রযুক্তিবিদ  সাবমারসিবল রোবট, সোনার এবং আন্ডারওয়াটার স্যাটেলাইট  ব্যবহার করে পানির নিচের সামুদ্রিক পরিবেশ, বাস্তুসংস্থান, জলবায়ু ও প্রাকৃতিক শক্তির উৎস বুঝতে সক্ষম হন। মাইক্রো প্রযুক্তি ও ন্যানো প্রযুক্তি: মাইক্রো প্রযুক্তি প্রচলিত যন্ত্রপাতি কে  ক্ষুদ্র লেভেলে  পরিচালিত করে। এই প্রযুক্তি এমন ক্যামকর্ডার ও কম্পিউটার তৈরি করেছে যা হাতের মুঠিতে মধ্যে রাখা সম্ভব। ন্যানো প্রযুক্তি আরো এক ধাপ এগিয়ে সবচেয়ে ক্ষুদ্রতম যন্ত্রের উদ্ভাবন করেছে। রাসায়নিক প্রযুক্তি: রাসায়নিক প্রযুক্তি বিভিন্ন ধরনের কাঁচামাল যেমন তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস  ইত্যাদি নিয়ে পরিশোধিত করে প্রচলিত বিভিন্ন জ্বালানি থেকে শুরু করে বর্তমানে বিভিন্ন আধুনিক বহনযোগ্য শক্তির উৎস উৎপন্ন করছে। এই প্রযুক্তি বিভিন্ন উপাদান বিশুদ্ধকরণ এর ক্ষেত্রে ও ব্যবহৃত হয়। যাতায়াত প্রযুক্তি: যাতায়াত প্রযুক্তি মানুষ, পণ্য এবং সেবা কে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় স্থানান্তরিত করে যেমন - কার, ট্রাক, প্লেন, ট্রেন, বাইক।এটি পরিবেশের উপর যাতায়াত ব্যবস্থার  প্রভাব নিয়েও আলোচনা করে। ইতিহাস পুরা প্রস্তর যুগ (২.৫ মিলিয়ন বছর পূর্ব - ১০ হাজার বছর পূর্ব) প্রথমদিকে মানুষের দ্বারা সরঞ্জাম এর ব্যবহার আবিষ্কার ও বিবর্তন অংশ ছিল। মানুষ প্রথম দিকে শিম্পাঞ্জির একটি প্রজাতি যা ইতিমধ্যে দ্বিপদী ছিল তা থেকে বিবর্তনের মাধ্যমে আসে যার মস্তিষ্কের ওজন ছিল আধুনিক মানুষের আধুনিক মানুষের এক-তৃতীয়াংশ। প্রাক-প্রাথমিক কালে মানুষের সরঞ্জাম ব্যবহারের ইতিহাস অপরিবর্তিত ছিল। প্রায় ৫০,০০০  বছর আগে সরঞ্জাম ও জটিল ব্যবহারের আবির্ভাব হয় এবং অনেক প্রত্নতাত্ত্বিকগণ এ সময় কে একটি পূর্ণাঙ্গ ভাষার আবির্ভাব বলে মনে করেন। পাথরের সরঞ্জাম আদি মানব  মিলিয়ন মিলিয়ন বছর আগে পাথরের সরঞ্জাম ব্যবহার করতেন। সর্বপ্রথম পাথরের হাতিয়ার ছিল ভাঙ্গা শিলা কিন্তু প্রায় ৭৫,০০০ বছর আগে  চাপের প্রয়োগ আরো সূক্ষ্ম কাজ করতে সাহায্য করে। আগুন শক্তির উৎস হিসেবে আগুনের আবিষ্কার ও ব্যবহার মানবসৃষ্ট প্রযুক্তির আবির্ভাবের অগ্রদূত ছিল। এই আবিষ্কারের সুনির্দিষ্ট তারিখ জানা যায়নি তবে ‘মানবজাতির ক্র্যাডল’ এ ১ মিলিয়ন বছর আগে গৃহ কাজে আগুনের ব্যবহার নিদর্শন পাওয়া যায়। পরীক্ষিত আদমশুমারি দেখায় যে মানুষ ৫০০ হাজার বছর এবং ৪০০  হাজার বছরের আগের মধ্যবর্তী সময়ে আগুনকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়। কাঠ ও কয়লার জ্বালানি ব্যবহার করে আগুনের দ্বারা মানুষের রান্না করা তাদেরকে সক্ষম করেছে খাদ্যের হজম যোগ্যতা, পুষ্টি ও উৎস বৃদ্ধি করতে। পোশাক ও আশ্রয় প্যালিওলিথিক কালে আরেকটি উল্লেখযোগ্য আবিষ্কার ছিল পোশাক ও আশ্রয় যার সঠিক তারিখ না জানা থাকলেও এটি মানুষের সভ্যতার বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্যালিওলিথিক কালের অগ্রসর এর সাথে সাথে মানুষের বাসস্থান আরো সংরক্ষণশীল ও প্রসারিত হতে থাকে এবং ৩৮০ হাজার বছর পূর্বের কাছাকাছি সময়ে মানুষ সর্বপ্রথম কাঠের তৈরি অস্থায়ী ঘর নির্মাণ করে। গাছের বাকল ও শিকারকৃত পশুদের চামড়া দ্বারা তৈরিকৃত পোশাক মানুষকে শীতপ্রধান অঞ্চলের ছড়িয়ে পড়তে সাহায্য করে এবং ২০০ হাজার বছর আগে আফ্রিকা ও ইউরেশিয়া মানুষ অভিবাসন শুরু করে। শাস্ত্রীয় প্রাচীনতার মাধ্যমে নিওলিথিক (১০ হাজার বছর পূর্ব - ৩০০ খ্রিস্টপূর্ব) মানুষের প্রযুক্তির উৎসাহ শুরু হয় যে প্রাক্কালে তাকে বলে নিওলিথিক পর্ব (নিউ স্টোন এজ)। মসৃণ পাথরের দন্ডের আবিষ্কার একটি উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি ছিল যার মাধ্যমে জঙ্গল কেটে চাষাবাদের তৈরি করা হয়। এই মসৃণ পাথরের দন্ডের ব্যবহার উল্লেখযোগ্য হারে বৃদ্ধি পায় নিওলিথিক কালে কিন্তু যা প্রকৃতপক্ষে আবিষ্কৃত হয় মেসোলিথিক খালে আয়ারল্যান্ডের মত কিছু জায়গায়। কৃষি উল্লেখযোগ্য মানুষের খাদ্যের যোগান দিত যার ফলে একইসাথে স্থানান্তর ও অধিক সন্তান  লালন পালন সম্ভব হয় কারণ তখন শিশুদের বহন করতে হত না যা নমাডিকদের জন্য অবশ্য পালনীয় ছিল। তাছাড়া শিকার নির্ভর অর্থনীতির চেয়ে কৃষিনির্ভর অর্থনীতিতে সন্তানেরা অধিক সহজে শ্রম দিতে পারছিল। একই সাথে জনসংখ্যা ও শ্রমের বৃদ্ধির ফলে শ্রমের ধরনের মধ্যে বিশেষত্বের  বৃদ্ধি হয়। যা প্রাথমিক নিওলিথিক গ্রাম থেকে প্রথম শহরের উত্তরণের সাহায্য করে যেমন - উরুক এবং প্রথম সভ্যতা যেমন - সুমার। যদিও তা অধিক পরিমাণে পরিচিত ছিল না। পর্যায়ক্রমিক সমাজব্যবস্থার এবং বিশেষায়িত শ্রমের বৃদ্ধির ফলে সংস্কৃতির মধ্যে বাণিজ্য ও যুদ্ধ শুরু হয়। প্রাকৃতিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে সেচ এর প্রয়োজনীয়তা এক্ষেত্রে প্রধান কারণ হিসেবে কাজ করেছে। ধাতব সরঞ্জাম প্রযুক্তির চলমান উন্নতির ফলে সোনা, তামা, রুপা, সিসা - বিশুদ্ধ ধাতুসমূহ গলানো ও আকার দেওয়া সম্ভব হয়েছে। পাথর ও কাঠের তৈরি সরঞ্জাম এর তুলনায় তামার তৈরি সরঞ্জাম গুলোর অধিক সুবিধা পরিষ্কারভাবে এগুলো ব্যবহারের তাগিদ শুরু হয়  নিওলিথিক কালের শুরুর দিকে (প্রায় ১০ হাজার বছর আগে)। বিশুদ্ধ তামা প্রকৃতিতে অধিক পরিমাণে পাওয়া যায় না কিন্তু এগুলোর আকরিক খুব সহজে পাওয়া যায় যা কাঠ ও  কয়লার আগুনে পুড়িয়ে খুব সহজে বিশুদ্ধ তামা পাওয়া যায়। এর পরিণতি ধাতু নিয়ে কাজ করার মাধ্যমে আবিষ্কার মিশ্র ধাতু হয় যেমন কাঁসা ও পিতল (প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ দিকে)। লোহার প্রথম মিশ্র ধাতু হিসেবে সর্বপ্রথম স্টিল ব্যবহৃত হয় খ্রিস্টপূর্ব ১৮০০ সালে। শক্তি ও পরিবহন ইতিমধ্যে মানুষ শক্তির অন্যান্য গ্রুপগুলো কাজে লাগাতে শুরু করেছে।বায়ুর ক্ষমতাকে কাজে লাগিয়ে নীল নদে প্রথম নামে পাল তোলা নৌকা চালানোর নিদর্শন পাওয়া যায় খ্রিস্টপূর্ব অষ্টম সহস্রাব্দের দিকে। প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে মিশরীরা নীল নদের বার্ষিক বন্যাকে কাজে লাগিয়ে সেচ কার্য পরিচালনা করত যা পরবর্তীতে তাদের পানি সংরক্ষণ করতে ও সাহায্য করেছিল। মেসোপটেমিয়ায় সুমেরীয়রা জটিল খাল ও নর্দমার মাধ্যমে টাইগ্রিস ও ইউফ্রেটিস নদীর পানিকে তাদের সেচে পরিণত করত। প্রত্নতত্ত্ববিদদের মতে চাকা প্রথম আবিষ্কৃত হয় খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ বছর পূর্বে একই সাথে কিন্তু পৃথকভাবে মেসোপটেমিয়া (বর্তমান ইরাক), উত্তর ককেশাস (মেকপ সংস্কৃতি) ও মধ্য ইউরোপে। খ্রিস্টপূর্ব ৫৫০০ থেকে ৩০০০ সময়কালে অধিকাংশের মতে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ সালে এটি আবিষ্কৃত হয় বলে ধারণা করা হয়। খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ এর দিকে সবচেয়ে পুরনো চাকার চিত্র পাওয়া যায়। যাইহোক এই চিত্র আঁকার সহস্রাব্দ আগে থেকে চাকার ব্যবহার অব্যাহত ছিল। অতি সম্প্রতি কাঠের তৈরি চাকার নিদর্শন পাওয়া যায় লুবলজানা স্লোভেনিয়ার জলাভূমিতে। চাকার আবিষ্কার বাণিজ্য যুদ্ধে বিপ্লব আনয়ন করে। এটা আবিষ্কার করতে বেশি সময় লাগেনি যে চাকার তৈরি মালগাড়ি  অধিক ভার বহন করতে পারে। প্রাচীন সুমেরীয়রা প্রথম কুমোরের চাকা ব্যবহার করেন অথবা আবিষ্কার করেন। খ্রিস্টপূর্ব ৩৪২৯ এর দিকে উর শহরে প্রথম কুমোরের চাকার নিদর্শন পাওয়া যায় এবং চাকার অন্যান্য পুরাতন নিদর্শনগুলো ওই একই অঞ্চলে পাওয়া যায়।এই ধরনের দ্রুত চাকা (ঘূর্ণনশীল) শক্তির রূপান্তরক হিসেবে প্রথম ব্যবহৃত হয় (পানিকল, বায়ুকল ও ট্রেডকল এর মাধ্যমে)। এর প্রয়োগ  মানুষের শ্রম বিহীন শক্তির উৎস হিসেবে বিপ্লব সাধন করে। প্রথম দুই চাকার গাড়ি তৈরি হয় ট্র্যাভয়েস থেকে যা প্রথম ব্যবহৃত হয় মেসোপটেমিয়া ও ইরানে খ্রিস্টপূর্ব ৩০০০ এর দিকে। প্রথম পাথরের তৈরি রাস্তা নির্মাণ হয় উর শহরে খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০ এর দিকে এবং কাঠের তৈরি নির্মাণ হয় ইংল্যান্ডের গ্লাস্টনবারির জলাবনে প্রায় একই সময়ের দিকে। খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ এর দিকে প্রথম দীর্ঘ রাস্তা তৈরি হয় পারস্যের গলফ থেকে ভূমধ্যসাগর পর্যন্ত প্রায় ১৫০০ মাইল  যদিও তা বাঁধানো ছিল না। খ্রিস্টপূর্ব ২০০০ এর দিকে ১৫ কিলোমিটার (৩০ মাইল) দীর্ঘ রাস্তা গ্রিক দ্বীপের ক্রিটের মিনোয়্যানরা নির্মাণ করেন যা দ্বীপের দক্ষিণ দিক গোর্তিন প্যালেস থেকে পর্বতের মধ্য দিয়ে দ্বীপের উত্তর দিক ননোসোস প্যালেস পর্যন্ত লম্বা। পূর্বের রাস্তার ব্যতিক্রম হিসেবে মিনোয়্যানদের তৈরি রাস্তা সম্পূর্ণরূপে বাঁধানো ছিল। চৌবাচ্চা স্থাপন মিনোয়্যানদের ব্যক্তিগত বাড়িতে চলমান পানির ধারা ছিল। বর্তমানের বাথটাবের আদি নিদর্শন ননোসোস প্যালেসে পাওয়া যায়। কতিপয় মিনোয়্যানদের ব্যক্তিগত বাড়িতে টয়লেট এর ব্যবস্থাও ছিল যা পানি ঢেলে পরিষ্কার করা হতো।প্রাচীন রোমানদের ফ্লাশ টয়লেট ছিল যা বিস্তর পয়ঃনিষ্কাশন পদ্ধতির দ্বারা খালি করা হতো। রোমের প্রথম ও প্রধান নর্দমা ‘ক্লোকা ম্যাক্সিমা’ খ্রিস্টপূর্ব ষষ্ঠ শতাব্দীর দিকে নির্মাণ শুরু হয় যা এখনো ব্যবহৃত হচ্ছে। প্রাচীন রোমানদের সুগঠিত কৃত্রিম জল-প্রণালী বা নালার ব্যবস্থা যা দূরবর্তী স্থানে পানি স্থানান্তরের জন্য ব্যবহৃত হতো। রোমানদের প্রথম প্রাচীন জল-প্রণালী খ্রিস্টপূর্ব ৩১২ সালে নির্মিত হয় এবং  একাদশতম ও শেষ জল-প্রণালী নির্মিত হয় খ্রিস্টপূর্ব ২২৬ সালে।একত্রে রোমান জল-প্রণালী প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার দীর্ঘ কিন্তু ৭০ কিলোমিটার এর কম দূরত্ব মাটির উপরে ও খিলান দ্বারা প্রতিষ্ঠিত। মধ্যযুগীয় এবং আধুনিক ইতিহাস (৩০০ খ্রিস্টপূর্ব - বর্তমান) মধ্যযুগে রেশম এর উদ্ভাবনের মাধ্যমে প্রযুক্তির উন্নয়ন চলতে থাকে (ইউরোপে এর পরিচিতি এশিয়ার পরিচিতি লাভের শতবর্ষ পর সম্পন্ন হয়)।পঞ্চম শতাব্দীতে রোমান সাম্রাজ্যের পতনের প্রথম কয়েক শত বছরের মধ্যে ঘোড়ার লাগাম ও ঘোড়ার খুরের নাল এর ব্যবহার শুরু হয়। মধ্যযুগীয় প্রযুক্তি দেখিয়ে দেয় সহজ যন্ত্র সমূহ এর ব্যবহার (যেমন লিভার, স্ক্রু ও পুলি) এর সমন্বয়ে আরো জটিল যন্ত্র যেমন ঠেলাগাড়ি, বায়ুকল ও ঘড়ি তৈরি হয় এবং বিশ্ববিদ্যালয় ব্যবস্থা করে উঠে যার মাধ্যমে বৈজ্ঞানিক ধারণা ও অনুশীলনগুলো ছড়িয়ে দেয়া হয়। রেনেসাঁ এর সময় প্রিন্টিং প্রেস (যা জ্ঞানের আদান প্রদানকে সহজ করে) সহ নানা আবিষ্কার সম্পন্ন হয় এবং প্রযুক্তি বিজ্ঞানের সাথে মিলে যৌথ ভাবে উন্নতি লাভ করতে থাকে।প্রযুক্তির উন্নতি খাদ্যের সরবরাহকে আরো নির্ভরশীল করে তুলে সাথে সাথে অন্যান্য ভোগ্যপণ্যের সরবরাহকে ও। অষ্টাদশ শতাব্দীতে যুক্তরাজ্যের শিল্প বিপ্লবের মধ্য দিয়ে কৃষি, উৎপাদন, খনন, কঠিন ধাতু  ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত আবিষ্কারের উন্নয়ন সাধিত হয়। যা  বাষ্প ইঞ্জিন ও ফ্যাক্টরি ব্যবস্থার মাধ্যমে গতি লাভ করে। প্রযুক্তি দ্বিতীয় শিল্প বিপ্লবের সময় (১৮৭০ সাল থেকে ১৯১৪ সাল) আরেকটি পদক্ষেপ নিয়ে বৈদ্যুতিক মোটর, আলোর বাতি ইত্যাদির মত আবিষ্কার এর সুবিধা পাইয়ে দেয়।প্রযুক্তির উন্নয়ন নতুন নতুন আবিষ্কারের ধারণা পরবর্তীতে চিকিৎসা, রসায়ন, পদার্থ বিজ্ঞান ও প্রকৌশল বিদ্যা এর জন্ম দেয়। প্রযুক্তির উত্তরোত্তর উন্নয়ন আকাশচুম্বী সফলতা লাভ করে এবং বড় বড় নগরের বাসিন্দারা এখন তাদের কাজের জন্য ও খাদ্য সরবরাহের জন্য স্বয়ংক্রিয় মোটর এর উপর নির্ভরশীল। টেলিগ্রাফ, টেলিফোন, রেডিও ও টেলিভিশনের আবিষ্কার এর মাধ্যমে যোগাযোগ ব্যবস্থা উন্নয়ন লাভ করে। ঊনবিংশ ও বিংশ শতাব্দীতে  বিমান ও মোটর গাড়ির আবিষ্কার যোগাযোগ ব্যবস্থায় বিপ্লব এনে দেয়। বিংশ শতাব্দী উদ্ভাবন এর পোষক হিসেবে কাজ করে। পদার্থবিজ্ঞানের ক্ষেত্রে নিউক্লিয়ার ফিশন এর আবিষ্কার নিউক্লিয়ার অস্ত্র ও নিউক্লিয়ার শক্তির দিকে ধাবিত করে। কম্পিউটার আবিষ্কারের পর ট্রানজিস্টর ও সমন্বিত বর্তনীর মাধ্যমে এগুলোকে ক্ষুদ্রাকারে নিয়ে আসা হয়। তথ্যপ্রযুক্তি পর্যায়ক্রমে উনবিংশ শতাব্দীর আশির দশকে ইন্টারনেটের জন্ম দেয় যা বর্তমান তথ্য যুগের ভিত্তি স্থাপন করে। মানুষ কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে মহাশূন্যে বিচরণ (উনবিংশ শতাব্দীর পঞ্চাশের দশকের শেষের দিকে, যা পরবর্তীতে টেলিকমিউনিকেশন এর ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়) শুরু করে ও সাথে সাথে চাঁদে যাওয়ার পরিকল্পনা শুরু করে (উনবিংশ শতাব্দীর ষাটের দশকে)। চিকিৎসা বিজ্ঞানের উন্নয়ন ওপেন হার্ট সার্জারি ও পরবর্তীতে স্টেম সেল থেরাপি ইত্যাদি নিয়ে আসে। জটিল উৎপাদন ও নির্মাণের প্রয়োজনে মানুষের কাজগুলো সহজ করার জন্য ইন্ডাস্ট্রি ও সংস্থাগুলো জটিল যন্ত্র উদ্ভাবন শুরু করে। আধুনিক প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করার জন্য এখন ডিজাইনার, নির্মাতা, ব্যবস্থাপক ও এর ব্যবহারকারীদের প্রশিক্ষণের প্রয়োজন হয়। অধিকন্তু প্রযুক্তির এখন এতটা জটিল হয়ে গেছে যে প্রকৌশল বিদ্যা, চিকিৎসা বিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান এই সমস্ত ক্ষেত্রগুলোকে এখন নির্মাণ, পরিবহন ও স্থাপনা সম্পন্ন করতে সংরক্ষণশীল ভাবে কাজ করতে হয়। দর্শন টেকনিসিজম সাধারণভাবে টেকনিসিজম হল মানব সমাজের উন্নয়নের জন্য প্রযুক্তি ব্যবহারের মতবাদ। আরেকটু জোরালোভাবে, ‘টেকনিসিজম বাস্তবতাকে নিয়ন্ত্রণ এবং বৈজ্ঞানিক ও প্রযুক্তিগত ভাবে সকল সমস্যা সমাধানের মৌলিক মনোভাবকে প্রতিফলিত করে’। অন্যভাবে বলা যায় মানুষ একদিন সকল সমস্যা সমাধানে সক্ষম হবে এবং সম্ভবত ভবিষ্যতকেও প্রযুক্তি দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করবে। যেমন, স্টিফেন ভি মন্সমা এই ধারণাগুলো কে ধর্মীয় বিশ্বাসের বিরুদ্ধে ও নৈতিকতা বিরোধী হিসেবে গণ্য করেছেন। অপটিমিজম অপটিমিস্টিক ধারণা গুলো ট্রান্সহিউম্যানিজম ও একবিন্দুবাদ দার্শনিক মতবাদের প্রবক্তাদের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত যা সাধারণত প্রযুক্তিকে মানুষের অবস্থা ও সমাজের জন্য উপকারী মনে করে। এই মতবাদ অনুযায়ী, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন নৈতিকভাবে ও ভালো। ট্রান্সহিউম্যানিস্টগণ  মনে করেন প্রযুক্তিগত ধারণা প্রতিবন্ধকতাকে অতিক্রম করতে সাহায্য করে ও যা সাধারণভাবে মনে করে মানুষের অবস্থা একটি প্রতিবন্ধকতা যা তাকে সব সময় অতিক্রম করতে হবে। একবিন্দুবাদীগণ মনে করেন একটি ‘ত্বরান্বিত পরিবর্তন’ যার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত উন্নয়নের গতি বৃদ্ধি পাবে এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার আবিষ্কারের মাধ্যমে অসীম উন্নয়নের মধ্য দিয়ে তা এককতায় পরিণত হবে। এককতায় পরিণত হওয়ার সময় এখনও অনুমান করা যায়নি তবে বিখ্যাত ভবিষ্যদ্বাণী প্রণেতা রে কুর্জওয়েল ধারণা করেন ২০৪৫ সালের মধ্যে এটি সংঘটিত হবে। কুর্জওয়েল তার মহাবিশ্বের ছয় যুগ ইতিহাসের জন্য পরিচিত - (১) ভৌতিক / রাসায়নিক যুগ, (২) জীব যুগ, (৩) মানব / বুদ্ধিমত্তার যুগ, (৪) প্রযুক্তির যুগ, (৫)কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার যুগ এবং (৬) বৈশ্বিক উপনিবেশায়নের যুগ। এক যুগ থেকে অন্য যুগে গমন একতা দ্বারা পরিচালিত ও ত্বরান্বিত হয়। প্রতিটি যুগ স্বল্প সময় নিয়ে গঠিত যার মানে বুঝায় সমগ্র মহাবিশ্বের ইতিহাস একটি প্রকাণ্ড এককতার ঘটনা মাত্র। কিছু সমালোচকগণ এই মতবাদ গুলো কে বৈজ্ঞানিকতা ও টেকনো-ইউটোপিয়ানিজম এর উদাহরণ হি সেবে গণ্য করেন এবং তারা মানুষের বর্ধন এবং প্রযুক্তিগত এককত্বের ধারণা নিয়ে শঙ্কিত। কিছু লোক কার্ল মার্কস কে  টেকনো-অপটিমিস্ট হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। স্কেপটিসিজম এবং ক্রিটিক্স কতিপয় সংশয়বাদী দার্শনিকগণ যেমন - হারবার্ট মার্কুস এবং জন জেরজান বিশ্বাস করে প্রযুক্তিগত সমাজ সহজাতভাবে ত্রুটিপূর্ণ।তারা প্রস্তাব করেন অত্যধিক প্রযুক্তিগত উন্নয়নের অবশ্যম্ভাবী ফলাফল হল স্বাধীনতা ও মানসিক স্বাস্থ্যের ক্ষয়। অনেকে যেমন লুডাইটস এবং প্রখ্যাত দার্শনিক মার্টিন হাইডেগার গুরুতর ক্ষয়কারী যদিও পুরোপুরি নয় ধারণা পোষন করেন প্রযুক্তি সম্পর্কে। হাইডেগার এর শিক্ষক হুবার্ট ড্রইফাস এবং চার্লস স্পিনোসা এর মতে, “হাইডেগার প্রযুক্তি এর বিরোধিতা করেন না। তিনি শুধু আশা করে প্রযুক্তিকে এমনভাবে প্রকাশ করতে, ‘যে প্রকারে কেউ আমাদেরকে সংশয় সম্পন্ন না করে প্রযুক্তিকে অন্ধভাবে অনুসরণ করতে’। যা তাকে প্রযুক্তির বিরুদ্ধে বিদ্রোহ করে তুলেছে”। প্রকৃতপক্ষে, তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে 'আমরা যখন প্রযুক্তির সারমর্মের কাছে একবার নিজেকে প্রকাশ করি, তখন আমরা নিজেকে অপ্রত্যাশিতভাবে একটি মুক্ত দাবিতে নিয়ে যেতে দেখি’। প্রযুক্তিগত-আশাবাদী বা টেকনো-হতাশাবাদীরা এর অনুমোদন দেওয়ার চেয়ে প্রযুক্তির সাথে আরও জটিল সম্পর্ককে অন্তর্ভুক্ত করে। প্রযুক্তির সবচেয়ে কটু সমালোচনা পাওয়া যায় যেমন - আলডাস হাক্সলির ‘ব্রেভ নিউ ওয়ার্ল্ড’, এন্থনি বার্জেস এর ‘এ ক্লকওয়ার্ক অরেঞ্জ’, এবং জর্জ অরওয়েলের ‘নাইনটিন এইটি ফোর’ এর মধ্যে যা এখন ডিস্টোপিয়ান ক্লাসিক সাহিত্য বলে মনে করা হয়। গ্যাটের ফাউস্ট এর মধ্যে,ফাউস্ট এর শয়তানের কাছে জড়জগৎ উপর ক্ষমতা বিনিময়ে তার আত্মা বিক্রি প্রায়ই শিল্প প্রযুক্তি গ্রহণ একটি রূপক হিসেবে ব্যাখ্যা করা হয়। সম্প্রতি, ফিলিপ কে ডিক ও উইলিয়াম গিবসনের বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনীর আধুনিক কাজগুলো এবং ব্লেড রানার ও গোস্ট ইন দ্য সেল এর মত চলচ্চিত্রগুলো মানব সমাজ ও পরিচয় এর উপর প্রযুক্তির প্রভাবের অত্যন্ত সতর্কতাপূর্ণ মনোভাব প্রকাশ করে। প্রয়াত সাংস্কৃতিক সমালোচক নীল পোস্টম্যান সরঞ্জাম-ব্যবহারকারী সমাজগুলোকে প্রযুক্তিগত সমাজগুলো এবং যেটিকে তিনি "টেকনোপলিজ" বলে সম্বোধন করেছেন সেগুলি থেকে আলাদা করেছেন যার মাধ্যমে প্রযুক্তিগত এবং বৈজ্ঞানিক অগ্রগতির আদর্শের দ্বারা অন্যান্য সাংস্কৃতিক চর্চা, মূল্যবোধ এবং বিশ্ব-মতামত ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। ডারিন বার্নি নাগরিকত্ব ও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির চর্চায় প্রযুক্তির প্রভাব সম্পর্কে লিখেছেন এবং প্রস্তাব করেন প্রযুক্তিটিকে চিহ্নিত করা যেতে পারে, (১) রাজনৈতিক বিতর্কের একটি বিষয় হিসেবে, (২) আলোচনার উপায় বা মাধ্যম হিসেবে, এবং (৩) গণতান্ত্রিক মুক্তি ও নাগরিকত্বের বিন্যাস হিসেবে। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির একটি বিন্যাস হিসেবে, বার্নি সুপারিশ করেছেন যে প্রযুক্তি একটি ভাল জীবন কী নিয়ে গঠিত এসব প্রশ্ন সহ নীতিগত প্রশ্ন তোলে, যা প্রায় অসম্ভব কারণ তারা ইতিমধ্যে প্রশ্নের উত্তর দিয়েছে: একটি ভাল জীবন হলো যা অধিক থেকে অধিকতর প্রযুক্তির ব্যবহারকে অন্তর্ভুক্ত করে। নিকোলাস কমপ্রিডিস নতুন প্রযুক্তি বিপদ নিয়েও লিখেছেন যেমন জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং, ন্যানোপ্রযুক্তি, সিন্থেটিক জীববিদ্যা এবং রোবোটিক্স । তিনি সতর্ক করেছেন যে এই প্রযুক্তিগুলি আমাদের জৈবিক প্রকৃতির স্থায়ীভাবে পরিবর্তনের সম্ভাবনা সহ মানুষের কাছে অভূতপূর্ব নতুন চ্যালেঞ্জের পরিচয় দেয়। এই উদ্বেগগুলি অন্যান্য দার্শনিক, বিজ্ঞানী এবং পাবলিক বুদ্ধিজীবীরা প্রকাশ করেছেন যারা অনুরূপ বিষয় সম্পর্কে লিখেছেন (যেমন ফ্রান্সিস ফুকুয়ামা, জর্জেন হাবেরমাস, উইলিয়াম জয় এবং মাইকেল স্যান্ডেল)। প্রযুক্তির আর একটি বিশিষ্ট সমালোচক হুবার্ট ড্রেইফাস , যিনি ‘অন দ্যা ​​ইন্টারনেট’ এবং ‘হোয়াট কম্পিউটারস স্টিল ক্যান টু ডো’ এর মতো বই প্রকাশ করেছেন। আরো কুখ্যাত প্রযুক্তি-বিরোধী গ্রন্থ হল ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল সোসাইটি এন্ড ইটস ফিউচার’, আনবমবার টেড ক্যাকজেনস্কি দ্বারা লিখিত এবং অনেকগুলি প্রধান সংবাদপত্র (এবং পরে বইগুলোতে) ছাপানো হয় তার টেকনো-শিল্প পরিকাঠামো বিরুদ্ধে বোমাবর্ষণ অভিযান শেষ করার একটি প্রচেষ্টা অংশ হিসেবে। এছাড়াও এমন উপ-সংস্কৃতি রয়েছে যা কিছু বা বেশিরভাগ প্রযুক্তি অস্বীকার করে যেমন স্ব-চিহ্নিত অফ-গ্রিডারগুলি। উপযুক্ত প্রযুক্তি উপযুক্ত প্রযুক্তির ধারণাটি বিকশিত হয়েছিল বিংশ শতাব্দীতে ই এফ শুমাচর এবং জ্যাক এলুলের মতো চিন্তাবিদদের দ্বারা এমন পরিস্থিতি বর্ণনা করার জন্য যেখানে খুব নতুন প্রযুক্তি ব্যবহার করা বা কাঙ্ক্ষিত কিছু কেন্দ্রীয় অবকাঠামো বা অংশ বা দক্ষতা বা অন্য কোথাও থেকে আমদানি করা দক্ষতাগুলির ব্যবহার করা বাঞ্ছনীয় ছিল না। ইকোভিলেজ আন্দোলন এর অংশ হিসেবে আবির্ভূত হয়। একবিংশ শতাব্দীতে অপটিমিজম ও স্কেপটিসিজম এই বিভাগটি মূলত আমেরিকান উদ্বেগকে কেন্দ্র করে এমনকি অন্য পশ্চিমা দেশগুলিতে যুক্তিসঙ্গতভাবে সাধারণীকরণ করা যেতে পারে। আমেরিকান চাকরির অপর্যাপ্ত পরিমাণ এবং গুণগত মান হল অন্যতম মৌলিক অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জ যার আমরা সম্মুখীন হই। প্রযুক্তি এবং এই মৌলিক সমস্যার মধ্যে যোগসূত্রটি কী? বার্নস্টেইন জ্যারেড, "আমেরিকান প্রত্যাশা, অক্টোবর ২০১৪ এ " এটি কোনও দক্ষতার অভাব নয় যা মজুরিকে কমিয়ে রাখে: এটি দুর্বল অর্থনীতি" জ্যারেড বার্নস্টেন, বাজেট এবং নীতি অগ্রাধিকার সেন্টারের সিনিয়র সহকর্মী তার নিবন্ধটিতে, প্রশ্ন তোলেন যে অটোমেশন এবং আরও ব্যাপকভাবে প্রযুক্তিগত অগ্রগতি প্রধানত এই ক্রমবর্ধমান শ্রমবাজার সমস্যা সৃষ্টিতে অবদান রাখে। তার থিসিসটি অপটিমিজম ও স্কেপটিসিজম এর মধ্যে তৃতীয় উপায় হিসেবে আবির্ভূত হয়। মূলত, তিনি বেকারত্ব এবং ক্রমহ্রাসমান মজুরি এর সাথে প্রযুক্তি এবং আমেরিকান ইস্যুগুলির মধ্যে যোগসূত্রের একটি নিরপেক্ষ পদ্ধতির পক্ষে দাঁড়িয়েছেন। তিনি তার বক্তব্য রক্ষার জন্য দুটি প্রধান যুক্তি ব্যবহার করেন। প্রথমত, সাম্প্রতিক প্রযুক্তিগত অগ্রগতির কারণে, একটি ক্রমবর্ধমান সংখ্যক শ্রমিক তাদের চাকরি হারাচ্ছেন। তবুও, বৈজ্ঞানিক প্রমাণ স্পষ্টভাবে প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে যে প্রযুক্তি এত বেশি শ্রমিককে বাস্তুচ্যুত করেছে যে এটি সমাধানের চেয়ে আরও বেশি সমস্যা তৈরি করেছে। প্রকৃতপক্ষে, অটোমেশন পুনরাবৃত্তিমূলক চাকরীর জন্য সুবিধাজনক তবে উচ্চতর কর্মসংস্থানগুলি এখনও প্রয়োজনীয় কারণ তারা প্রযুক্তি এবং ম্যানুয়াল কাজের পরিপূরক যার জন্য "নমনীয়তার বিচার এবং সাধারণ জ্ঞানের প্রয়োজন" যা মেশিনগুলির দ্বারা প্রতিস্থাপন করা কঠিন হয়ে যায়। দ্বিতীয়ত, অধ্যয়নগুলি সাম্প্রতিক প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং গত দশকগুলির মজুরি প্রবণতার মধ্যে সুস্পষ্ট যোগসূত্র দেখায় নি। সুতরাং, বার্নস্টেইনের মতে, বর্তমান আমেরিকান বর্ধমান বেকারত্ব ও ক্রমহ্রাসমান মজুরির উপর প্রযুক্তি এবং এর অনুমানমূলক প্রভাবগুলিতে মনোনিবেশ করার পরিবর্তে, "অচল নীতি যা চাহিদা, বাণিজ্য, আয় এবং সুযোগের ভারসাম্যহীনতা পূরণ করতে ব্যর্থ হয়" সে সম্পর্কে আরও বেশি চিন্তা করা দরকার। জটিল প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা টমাস পি হিউজেস বলেছিলেন যে প্রযুক্তি সমস্যা সমাধানের মূল উপায় হিসাবে বিবেচিত হয়েছে, তাই আরও কার্যকরভাবে এটি ব্যবহার করার জন্য আমাদের এর জটিল এবং বিচিত্র চরিত্র সম্পর্কে সচেতন হওয়া দরকার। চাকা বা কম্পাস এবং রান্না করার যন্ত্র যেমন ওভেন বা গ্যাসের চুলার মধ্যে পার্থক্য কী? আমরা কি তাদের সমস্ত কিছু, বা কেবল তাদের একটি অংশ, অথবা না তাদের কোনওটিকেই প্রযুক্তি হিসাবে বিবেচনা করতে পারি? প্রযুক্তি প্রায়শই খুব সংকীর্ণ হিসাবে বিবেচিত হয়; হিউজেসের মতে, "প্রযুক্তি মানবীয় কৌতূহল জড়িত একটি সৃজনশীল প্রক্রিয়া"। এই সংজ্ঞাটি সৃজনশীলতার উপর জোর সীমাহীন সংজ্ঞাগুলো এড়িয়ে চলে যা ভুলভাবে রান্না করাকে "প্রযুক্তি" এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করতে পারে; তবে এটি জটিল প্রযুক্তিগত সিস্টেমগুলির ব্যবহারের জন্য মানুষের ভূমিকা এবং তাদের দায়িত্ব এর উপর গুরুত্বারোপও করে। তবুও, যেহেতু প্রযুক্তি সর্বত্র রয়েছে এবং নাটকীয়ভাবে ভূদৃশ্য এবং সমাজ গুলোকে পরিবর্তন করেছে, হিউজেস যুক্তি দিয়েছিলেন যে প্রকৌশলী , বিজ্ঞানীরা এবং পরিচালকরা প্রায়শই বিশ্বাস করেছেন যে তারা প্রযুক্তিটিকে তারা যেমন চান তেমন রূপ দেওয়ার জন্য ব্যবহার করতে পারে্ন। তারা প্রায়শই ধরে নিয়েছে যে প্রযুক্তি সহজেই নিয়ন্ত্রণযোগ্য এবং এই অনুমানটি যথাযথভাবে প্রশ্ন করা উচিত। উদাহরণস্বরূপ, অ্যাভজেনি মরোজভ বিশেষত দুটি ধারণাকে চ্যালেঞ্জ করেছেন: "ইন্টারনেট কেন্দ্রিক" এবং "সমাধানবাদ"। ইন্টারনেট কেন্দ্রিক ধারণাটি বোঝায় যে আমাদের সমাজ নিশ্চিত যে ইন্টারনেট অন্যতম স্থিতিশীল এবং সুসংহত শক্তি। সমাধানবাদ হল একটি আদর্শ যা বিশ্বাস করে প্রযুক্তির এবং বিশেষত ইন্টারনেটের সুবাদে প্রতিটি সামাজিক সমস্যা সমাধান করা যায়। আসলে, প্রযুক্তির অভ্যন্তরীণভাবে অনিশ্চয়তা এবং সীমাবদ্ধতা রয়েছে। আলেক্সিস মাদ্রিগালের মোরোজভের তত্ত্বের পর্যালোচনা অনুসারে, এটিকে অবহেলা করলে "অপ্রত্যাশিত পরিণতি তারা যে সমস্যার সমাধান করতে চায় তার চেয়ে বেশি ক্ষতির কারণ হতে পারে"। বেনজামিন আর কোহেন এবং গেন ওয়েটিংগার প্রযুক্তির বহুল যোজী প্রভাব সম্পর্কেও আলোচনা করেছিলেন। অতএব, প্রযুক্তির সীমাবদ্ধতাগুলির  নির্ণয় এবং আরও ব্যাপকভাবে বৈজ্ঞানিক জ্ঞান প্রয়োজন - বিশেষত পরিবেশগত বিচার এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কিত সমস্যাগুলির ক্ষেত্রে। ওটিঞ্জার এই যুক্তিটি অব্যাহত রেখেছেন এবং যুক্তি দিয়েছেন যে বৈজ্ঞানিক জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার চলমান স্বীকৃতি বিজ্ঞানীদের এবং ইঞ্জিনিয়ারদের তাদের ভূমিকার নতুন অনুধাবনের সাথে মিশে গেছে। প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের এই ধরনের প্রভাবে প্রযুক্তিগত পেশাদারদের এই প্রক্রিয়াটিতে তাদের ভূমিকা আলাদাভাবে বিবেচনা করা উচিত। কেবলমাত্র তথ্য এবং প্রযুক্তিগত সমাধান সরবরাহকারীদের চেয়ে গবেষণা এবং সমস্যা সমাধানে তাদের নিজেকে নিয়োজিত করতে হবে। অন্যান্য প্রাণী প্রজাতি মৌলিক প্রযুক্তির ব্যবহার মানব ছাড়াও অন্যান্য প্রাণী প্রজাতির বৈশিষ্ট্য। এর মধ্যে শিম্পাঞ্জি, কিছু ডলফিন সম্প্রদায়, এবং কাকের মতো প্রাইমেট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। প্রযুক্তির আরও বৈশিষ্ট্যগত দৃষ্টিভঙ্গিকে সক্রিয় পরিবেশগত নিয়ন্ত্রণ ও নিয়ন্ত্রণের নীতিশাস্ত্র হিসেবে বিবেচনা করে আমরা প্রাণীর উদাহরণ গুলি যেমন বিভার এবং তাদের বাঁধগুলো, বা মৌমাছি এবং তাদের মধুচক্রগুলিও উল্লেখ করতে পারি। সরঞ্জাম তৈরি ও ব্যবহারের দক্ষতা একসময় Homo গণ এর একটি সংজ্ঞাযুক্ত বৈশিষ্ট্য হিসেবে বিবেচিত হত। তবে শিম্পাঞ্জি এবং এদের সম্পর্কিত প্রাইমেটের মধ্যে সরঞ্জাম নির্মাণের আবিষ্কারটি মানুষের একমাত্র প্রযুক্তি ব্যবহারের ধারণাটিকে প্রত্যাখ্যান করেছে। উদাহরণস্বরূপ, গবেষকরা পর্যবেক্ষণ করেছেন বুনো শিম্পাঞ্জি গুলি চারণের জন্য সরঞ্জামগুলি ব্যবহার করে: ব্যবহৃত কয়েকটি সরঞ্জামের মধ্যে রয়েছে লিফ স্পঞ্জস , ডাইমেট ফিশিং প্রোব, কীটপতঙ্গ এবং লিভার। পশ্চিম আফ্রিকান শিম্পাঞ্জি পাথরের হাতুড়ি ও নেহাই ব্যবহার করে বাদাম গুঁড়া করার জন্য যেমনটা বোয়া ভিস্তা, ব্রাজিল এর একপ্রকার সন্ন্যাসী বানরও করে থাকে। ভবিষ্যত প্রযুক্তি প্রযুক্তির তত্ত্বগুলি প্রায়শই কোনো সময়ের উচ্চ প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞানের উপর ভিত্তি করে প্রযুক্তির ভবিষ্যতের ভবিষ্যদ্বাণী করার চেষ্টা করে। ভবিষ্যতের সমস্ত পূর্বাভাসের মতো, প্রযুক্তিও অনিশ্চিত। ২০০৫ সালে, ভবিষ্যৎ বিদ রে কুর্জওয়েল ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে প্রযুক্তির ভবিষ্যতে মূলত জেনেটিক্স, ন্যানো টেকনোলজি ও রোবটিক্স এর একটি ওভারল্যাপিং "জিএনআর রেভোলিউশন" সমন্বয় থাকবে এবং এই তিনটির মধ্যে রোবটিক্স সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হবে। তথ্যসূত্র আরও পড়ুন . প্রযুক্তি মূল বিষয়ের নিবন্ধ প্রযুক্তি ব্যবস্থা
https://en.wikipedia.org/wiki/Technology
Technology
Technology is the application of conceptual knowledge to achieve practical goals, especially in a reproducible way. The word technology can also mean the products resulting from such efforts, including both tangible tools such as utensils or machines, and intangible ones such as software. Technology plays a critical role in science, engineering, and everyday life. Technological advancements have led to significant changes in society. The earliest known technology is the stone tool, used during prehistoric times, followed by the control of fire, which contributed to the growth of the human brain and the development of language during the Ice Age. The invention of the wheel in the Bronze Age allowed greater travel and the creation of more complex machines. More recent technological inventions, including the printing press, telephone, and the Internet, have lowered barriers to communication and ushered in the knowledge economy. While technology contributes to economic development and improves human prosperity, it can also have negative impacts like pollution and resource depletion, and can cause social harms like technological unemployment resulting from automation. As a result, philosophical and political debates about the role and use of technology, the ethics of technology, and ways to mitigate its downsides are ongoing.
1228
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF
সাহিত্য
সাহিত্য বলতে যথাসম্ভব কোনো লিখিত বিষয়বস্তুকে বুঝায়। সাহিত্য শিল্পের একটি অংশ বলে বিবেচিত হয়, অথবা এমন কোনো লেখনী, যেখানে শিল্পের বা বুদ্ধিমত্তার আঁচ পাওয়া যায়, অথবা যা বিশেষ কোনো প্রকারে সাধারণ লেখনী থেকে আলাদা৷ মোটকথা, ইন্দ্রিয় দ্বারা জাগতিক বা মহাজাগতিক চিন্তা চেতনা, অনুভূতি, সৌন্দর্য ও শিল্পের লিখিত বা লেখকের বাস্তব জীবনের অনুভূতি হচ্ছে সাহিত্য। ধরন অনুযায়ী সাহিত্যকে কল্পকাহিনি বা বাস্তব কাহিনি কিংবা পদ্য, গদ্য এই দুইভাগে ভাগ করা যায়। পদ্যের মধ্যে ছড়া, কবিতা ইত্যাদি, গদ্যের মধ্যে প্রবন্ধ, নিবন্ধ, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি শাখা হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা যায়। এছাড়াও অনেকে নাটককে আলাদা প্রধান শাখা হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করেন। নাটকের মধ্যে নাটিকা, মঞ্চনাটক ইত্যাদিকে ভুক্ত করা যায়। প্রধান ধারা পদ্য পদ্য (ইংরেজি: Poetry) হলো সাহিত্যিক ধারার একটি রূপ, যা কোনো অর্থ বা ভাব প্রকাশের জন্য গদ্যছন্দে প্রতীয়মান অর্থ না ব্যবহার করে ভাষার নান্দনিক ও ছন্দোবদ্ধ গুণ ব্যবহার করে থাকে। পদ্যে ছন্দোবদ্ধ বাক্য ব্যবহারের কারণে গদ্য থেকে ভিন্ন। গদ্য বাক্য আকারে লেখা হয়, পদ্য ছত্র আকারে লেখা হয়। গদ্যের পদবিন্যাস এর অর্থের মাধ্যমে বুঝা যায়, যেখানে পদ্যের পদবিন্যাস কবিতার দৃশ্যমান বিষয়বস্তুর উপর নির্ভরশীল। গদ্য গদ্য হলো ভাষার একটি রূপ, যা সাধারণ পদবিন্যাস ও স্বাভাবিক বক্তৃতার ছন্দে লেখা হয়। গদ্যের ঐতিহাসিক বিকাশ প্রসঙ্গে রিচার্ড গ্রাফ লিখেন, "প্রাচীন গ্রিসের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক গবেষণায় দেখা যায় যে, গদ্য তুলনামূলকভাবে অনেক পরে বিকশিত হয়েছে, এই "আবিষ্কার" ধ্রুপদী যুগের সাথে সম্পর্কিত।" নাটক নাটক হলো এমন এক ধরনের সাহিত্য, যার মূল উদ্দেশ্য হলো তা পরিবেশন করা। সাহিত্যের এই ধারায় প্রায়ই সঙ্গীত ও নৃত্যও যুক্ত হয়, যেমন গীতিনাট্য ও গীতিমঞ্চ। মঞ্চনাটক হলো নাটকের একটি উপ-ধরন, যেখানে একজন নাট্যকারের লিখিত নাটকীয় কাজকে মঞ্চে পরিবেশন করা হয়ে থাকে। এতে চরিত্রগুলোর সংলাপ বিদ্যমান থাকে এবং এতে পড়ার পরিবর্তে নাটকীয় বা মঞ্চ পরিবেশনা হয়ে থাকে। আরো দেখুন আন্তর্জাতিক বাংলা সাহিত্য পরিষদ বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ পাদটীকা তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জি বহিঃসংযোগ ডিকশনারী অব দ্য হিস্টোরি অব আইডিয়াস কার্ণেগী মেলন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিশ্বজনীন পাঠাগার ইংলিশ লিটারেচার ফোরাম প্রজেক্ট গুটেনবার্গের অনলাইন পাঠাগার আর্টস, বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকম সাহিত্য সংস্কৃতি মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Literature
Literature
Literature is any collection of written work, but it is also used more narrowly for writings specifically considered to be an art form, especially novels, plays, and poems. It includes both print and digital writing. In recent centuries, the definition has expanded to include oral literature, much of which has been transcribed. Literature is a method of recording, preserving, and transmitting knowledge and entertainment. It can also have a social, psychological, spiritual, or political role. Literature, as an art form, can also include works in various non-fiction genres, such as biography, diaries, memoirs, letters, and essays. Within its broad definition, literature includes non-fictional books, articles, or other written information on a particular subject. Etymologically, the term derives from Latin literatura/litteratura, "learning, writing, grammar," originally "writing formed with letters," from litera/littera, "letter." In spite of this, the term has also been applied to spoken or sung texts. Literature is often referred to synecdochically as "writing," especially creative writing, and poetically as "the craft of writing" (or simply "the craft"). Syd Field described his discipline, screenwriting, as "a craft that occasionally rises to the level of art." Developments in print technology have allowed an ever-growing distribution and proliferation of written works, which now include electronic literature.
1231
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A8%E0%A7%83%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF
নৃত্য
নৃত্য শব্দটি সাধারণত শারীরিক নড়াচড়ার প্রকাশভঙ্গীকে বোঝায়। এ প্রকাশভঙ্গী সামাজিক, ধর্মীয় কিংবা মনোরঞ্জন ক্ষেত্রে দেখা যায়। গীতবাদ্যের ছন্দে অঙ্গভঙ্গির দ্বারা মঞ্চে চিত্রকল্প উপস্থাপনের ললিত কলাই নৃত্য বা নাচ। নৃত্যকলার সংজ্ঞা নির্ভর করে সামাজিক, সাংস্কৃতিক, নন্দনতত্ত্বিক, শৈল্পিক এবং নৈতিক বিষয়ের উপর। এই আন্দোলনের নান্দনিক এবং প্রতীকী মূল্য আছে। নৃত্যকে বিভিন্নভাবে শ্রেনীবিভাগ করা যায়। কোরিওগ্রাফি, আন্দোলনের ধরন, ঐতিহাসিক সময়কাল বা উৎপত্তিস্থল উল্লেখযোগ্য। যদিও থিয়েটার ও সামাজিক নৃত্যকে সবসময় আলাদা শ্রেণীতে ভাগ করা হয় না, তবুও এর উদ্দেশ্যে বিশেষ পার্থক্য রয়েছে। পরিবেশনা এবং অংশগ্রহণ মঞ্চে পরিবেশিত নৃত্য-এর প্রাথমিক উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রদর্শনী, একে সঙ্গীতানুষ্ঠানের নৃত্যও বলা যায়। এই নৃত্য সাধারণতঃ গুণী শিল্পীদের মঞ্চে মঞ্চ পরিবেশনার মাধ্যমে মঞ্চস্থ হয়। এই নাচগুলোতে বেশীরভাগ সময়েই কোন না কোন গল্প বলা হয়। আর এই গল্পগুলি বলা হয় মুকাভিনয়, পোশাক ও দৃশ্যপটের সাহায্যে, কখনো কেবল সঙ্গীতের মাধ্যমে এই নৃত্যগুলি পরিবেশন করা হয়। এই সঙ্গীত বিশেষভাবে কেবল মঞ্চে নাচ পরিবেশনের জন্য তৈরী ও পরিবেশন করা হয়, যদিও এই গানের বিষয়টি কোন বাধ্যতামূলক কিছু নয়। পশ্চিমা ব্যালে ও আধুনিক নৃত্য, ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্য যেমন, ভরতনাট্যম, চীন ও জাপানের গান এবং নৃত্যনাট্য যেমন ড্রাগন নৃত্য এই ধরনের সঙ্গীতের সাথে নাচের উদাহরণ। বেশীরভাগ শাস্ত্রীয নৃত্য কেবল নাচের জন্য হলেও পরিবেশনার জন্য নৃত্য অপেরা এবং অন্যান্য সঙ্গীতপ্রধান নাট্যে পরিবেশিত হয়। নৃত্যকলার ইতিহাস প্রাচীন মানুষের ছেড়ে যাওয়া বিভিন্ন বস্তু নিদর্শনের মতো নৃত্যকলার তেমন কোন বস্তু না পাওয়া গেলেও নৃত্যকলা প্রাচীন মানবের বিভিন্ন আচার উৎসবে নৃত্যের প্রমাণ পাওয়া যায়। প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শনে প্রগৈতিহাসিক কালে নৃত্যকলার প্রমাণ পাওয়া যায়। খৃষ্টপূর্ব ৩৩০০ সালে মিশরীয় দেয়াল চিত্রে এবং ভারতের গুহা চিত্রে নৃত্যকলার ভঙ্গী উৎকীর্ণ রয়েছে। দেয়ালচিত্রে খোদিত ভঙ্গীগুলো হতে মনে হয় যে কিংবদন্তির কাহিনী পরিবেশনের জন্যই ঔ চিত্রগুলো উৎকীর্ণ করা হয়েছে। এটা বলার অপেক্ষা রাখে না যে লিখিত বর্ণমালা প্রচলনের আগে নৃত্যকলার এই পদ্ধতির মাধ্যমেই এই সব গল্প বংশ পরম্পরায় চলে আসতো। নৃতকলার আরো একটি প্রাচীন প্রকাশ দেখা যায় অতীন্দ্রিয় চেতনায় বিভিন্ন কু-প্রভাব হতে মুক্ত করার আচার অনুষ্ঠানে। আজো নৃত্যকলার এই ব্যবহার ব্রাজিলীয় চিরহরিৎ বনাঞ্চলের সংস্কৃতি হতে কালাহারি মরুভুমির সংস্কৃতি পর্যন্ত বিস্তৃত। সঙ্গীত সাধারণতঃ নৃত্য পরিবেশিত হয় সঙ্গীত সহযোগে, যদিও এমনটাই একচেটিয়া কোন নিয়ম নয়। তাছাড়া সঙ্গীতের সাথেই একই সময়ে নৃত্য পরিবেশিত নাও হতে পারে। কিছু নাচ,সঙ্গীতের সাথে অতিরিক্ত হিসেবে তার নিজের শ্রবণযোগ্য শব্দ যোগ করে নাচের সময়(যেমন ট্যাপ ড্যান্স বা ট্যাপ নৃত্য)। নৃত্যের পূর্বের ধরনগুলোতে নৃত্য ও সঙ্গীত একটি আরেকটির পরিপূরক হিসেবে তৈরী হয়েছিল এবং নিয়মিত পরিবেশিত হত। এই ধরনের সঙ্গীত ও নৃত্যের সম্মিলনে নাচের উল্লেখযোগ্য উদাহরণ হলো জিগ, ওয়াল্টয, ট্যাংগো, ডিসকো ও সালসা। কিছু সঙ্গীত ঘরাণার আবার সমান্তরাল নৃত্যশৈলী আছে, যেমন বারোকী সঙ্গীত ও বারোকী নৃত্য। অন্য ধরনগুলোর কিছু বৈশিষ্ট্য এক থাকলেও আলাদাভাবে সঙ্গীত ও নৃত্যধারা বিকশিত হয়েছে,শাস্ত্রীয় সঙ্গীত ও শাস্ত্রীয় ব্যালে নাচের কথা এক্ষেত্রে বলা যায়। নৃত্যবিন্যাস ও নাচের গান যেন একে অন্যের সহচর, যা নৃত্য নির্দেশক ও নৃত্যশিল্পীরা তাদের নাচের মধ্যের গল্প বা কাহিনী বলার জন্য একসাথে মিলিয়ে পরিবেশন করেন। ছন্দ ছন্দ ও নৃত্য গভীরভাবে এক অন্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত, ঐতিহাসিকভাবে এবং প্রচলিত অর্থে। যুক্তরাষ্ট্রের নৃত্যশিল্পী টেড শন লিখেছেন “ছন্দের ধারণা, নৃত্যের সকল পাঠের সাথে মিশে আছেে এমনভাবে যে এই বিষয়ে অনন্তকাল কথা বললেও তা শেষ হবে না।” একটি সঙ্গীতের ছন্দের দুটি প্রধাণ উপকরণ থাকে, প্রথমটি হলো একটি নিয়মিতভাবে পুনরাবৃত্ত স্পন্দন (যাকে তাল বা টাকরাও বলা হয়), যে স্পন্দন গানের লয় বা গতি ঠিক করে দেয়। অপরটি হলো বিরতি ও শব্দাংশের একটি নির্দিষ্ট নমুনা,যা মৌলিক ছন্দের দৈর্ঘ্য ঠিক করে দেয়। সাধারণতঃ মূল ছন্দ সব সময় সমান দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট সহজ প্রকৃতির হয়ে থাকে। নৃত্যশিল্পীদের সাধারণতঃ গতি ও ছন্দের একটি নির্দিষ্ট ধরন থাকে। উদাহরণস্বরুপ ট্যাংগোর কথা বলা যায়, যেখানে প্রতি মিনিটি মোটামুটিভাবে ৬৬ তালের ৪ ভাগের ২ ভাগ ছন্দের আবর্তনে নাচতে হয়। মৌলিক ধীর পদক্ষেপ, যাকে ‘ধীর’ বলা হয়, তা এক আবর্তন পর্যন্ত স্থায়ী হয়, যার অর্থ হচ্ছে একটি পুরো বাম থেকে ডান পর্যন্ত পদক্ষেপ একটি ছন্দের ৪ ভাগের ২ ভাগ দৈর্ঘ্য হয়ে থাকে। নাচটির মৌলিক আরেকটি পায়ের কাজ সামনে ও পেছনে চলা একইভাবে “ধীর-ধীর” ছন্দে গণণা করা হয়, যেখানে অনেক অতিরিক্ত হাতের বা পায়ের কাজকে “ধীর-দ্রুত-দ্রুত” ছন্দে গণনা করা হয়। বারবার পুনরাবৃত্ত শারিরীক আন্দোলন প্রায়ই ‘শক্তিশালী’ ও ‘দুর্বল’ পৌরুষচিত নড়াচরার সাথে তুলনীয়, ঠিক যেমন সঙ্গীতের ছন্দকে সবল ও দুর্বল তাল দিয়ে বোঝানো যায়। এটা খুবই প্রাকৃতিক যে, অনেক নাচ ও সঙ্গীতের তালের দৈর্ঘ্য দুই বা চার মাত্রার হয়। এটা অনেকটা মানুষের শরীরের দ্বি প্রতিসাম্যতার মত, যেমন ডান-বাম, সম্মুখ-পশ্চাৎ ও উত্থান-পতন। কিছু নৃত্যের ছন্দ আবার সাধারণভাবেই তিন মাত্রার ছন্দে পড়ে। যেখানে কোন কোন মুদ্রার প্রকাশে অন্য ছন্দের মাত্রার তুলনায় বেশী সময়েরর মাত্রার প্রয়োজন হয়, যেমন একটি হাতুড়ীকে তোলার জন্য হাতুড়ীটি দিয়ে আঘাত তরার চেয়ে বেশী সময় প্রয়োজন। ক্ষেত্রবিশেষে, ঐতিহ্যগতভাবেই জটিল ছন্দের নৃত্যশৈলী দেখা যায়, যেমনটা আমরা দেখি বলকান অঞ্চলের লোক নৃত্যের বেলায়। জটিল মুদ্রা ও তাল বিশিষ্ট নৃত্যের জন্য সর্ব সময় নির্দিষ্ট সুর ও কথার সমন্বয়ে নির্দিষ্ট ক্রমের শারিরীক আন্দোলন ও পদচালনার মিশ্রণে নৃত্যটি নির্মাণ করা হয়। নাচের মুদ্রা, পদসঞ্চালন ছন্দোময় তালের প্রাথমিক কাঠামো তৈরী করে, যেটা যেকোন নেপথ্য সঙ্গীতের তৈরী করার শক্তি নেই। সঙ্গীতের মত নৃত্যেরও সময়কে বেধে রাখার ক্ষমতা প্রয়োজন হয়, দর্শকের মনোরঞ্জনের জন্য। হাঁটা, খনন করা, কিছু টেনে নিয়ে যাওয়া এই সকল বিষয়ের পরিবেশনের পরিশীলিত রূপ নৃত্যের মান তৈরী করে। এই সকল কাজের সঠিক পুনরাবৃত্ত প্রধান উপস্থাপনের চেয়ে নান্দনিক প্রকাশ নাচের জন্য জরুরী। একদম প্রথমদিকের নৃত্যগুলোর মধ্যেই সঙ্গীতের সহযোগ নাচের সাথে দেখা যায়। প্রাচীন মিশরীযরা দেবতা এ্যাথোটাসের থেকে নৃত্যের উৎসকে সম্পর্কিত করে। বলা হয়ে থাকে যে, এই দেবতা ধর্মীয় রীতি পালনের সময় গানের সাথে উপাসকদের ছন্দোবদ্ধ নড়াচড়ার বিষয়টি লক্ষ্য করেন। এই নড়াচড়ার বিষয়টি আবার নির্দিষ্ট অনুপাতে হয়ে থাকে। নৃত্য যে, সঙ্গীতের ছন্দের থেকে উৎপন্ন হয়েছে, এই ধারণা এখনো ইউরোপীয় রেনেসায় মনে করা হয়। নৃত্য গুরু গুইগিয়েলমো এবরিও ডা পেসারো এর কাজে তা দেখা যায়। পেসারো বলেন যে, নৃত্য একটি শারিরীক আন্দোলনের প্রকাশ, যা কাঠামো তৈরী করে, আন্দেলিত শরীরের সাথে পরিবর্তনশীল মানসিক অবস্থার প্রকাশ করে। সঙ্গীতের সাথে শারিরীক আন্দোলন ও আত্মিক পরিবর্তনের পরিমাপ একটি নিখুত সম্মিলন হিসেবে শ্রোতার কর্ণকুহরে প্রবেশ করে। পন্থা থিয়েটার সঙ্গীতানুষ্ঠানের নৃত্য, যেমন অপেরায়, সাধারণত বড় আয়োজনের নৃত্য হয়। কারণ অপেরার বর্ণণামূলক নাটকীয় ধরন, যার জন্য বৃহত পরিসরের নাচের প্রয়োজন পড়ে। এই ধরনের নৃত্যের মুদ্রা ও অঙ্গভঙ্গি গুলো অপেরার চরিত্রগুলোর নিজস্বতা ও ব্যক্তিত্বকে অনুসরণ করে এবং চরিত্রগুলোর কাহিনীতে যে ভূমিকা বা গুরুত্ব আছে সেই অনুযায়ী নৃত্যের মু্দ্রা হয়ে থাকে। অপেরার নৃত্যের দীর্ঘ ও অপেক্ষাকৃত ব্যকরণ মুক্ত মুদ্রার কারণ অপেরার চরিত্র অনুযায়ী নৃত্যের উপস্থাপনের প্রয়োজনীয়তা। অপরদিকে যে সকল নৃত্যের এই ধরনের বর্ণনাত্মক চরিত্রকে তুলে ধরতে হয় না, তাদের নৃত্যের মুদ্রা অপেক্ষাকৃত ব্যকরণ অনুযায়ী হয়ে থাকে। আবার যে ছন্দোবদ্ধ বিরতিযুক্ত যে ব্যালে নাচের বিবর্তন ও উন্নয়ন ঘটেছে ১৯ শতক জুড়ে, ২০ শতকে সেই নাচ পরিণত হয়েছে সম্পূর্ণ কাহিনী বিবর্জিত পরিবেশনায়। যার ফলে সম্ভব হয়েছে ব্যালে নৃত্যে দ্রুত ছন্দের পদচালনার অন্তর্ভুক্তি ঘটানো, যার খুব পরিচিত একটি উদাহরণ ‘দি সিগনেট নৃত্য’ যা ‘সোয়ান লেক” এর দ্বিতীয় অঙ্কে দেখা যায়। অংশগ্রহণমূলক এবং সামাজিক সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এশিয়া সকল ভারতীয় নৃত্য জন্ম নিয়েছে নাট্যশাস্ত্র থেকে। যারফলে প্রত্যেকেরই একরকম সাধারণ বৈশিষ্ট্য দেখা যায়। যেমন হাতের ভঙ্গিতে (মৃুদ্রা), আঙ্গিক অবস্থানে, পদ সঞ্চালনে এবং নাটকীয় মুখভঙ্গিতে যাকে অভিনয় বলা হয়। ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সহযোগে নৃত্যগুলি পরিবেশিত হয়, প্রায় সকল নৃত্যশৈলীর শিল্পীরা পায়ের গোড়ালীর চারপাশে ঘন্টা বাধেন, এই ঘন্টাগুলোর সংঘর্ষে যে শব্দ হয় তার মাধ্যমে সঙ্গীতের বিপরীতে নৃত্য শিল্পী উত্তর দেন। আজকাল ভারতীয় শাস্ত্রীয় নৃত্যের অনেকগুলো আঞ্চলিক ধরন দেখা যায়।“অদরা মাগাধী” নৃত্যটি দীর্ঘদিনের বিতর্কের পর বর্তমান সময়ের ওড়িশ্যা,মিথিলার আঞ্চলিক নৃত্য ওডিসি(ওড়িশি)র সাথে সম্পর্কিত বলা হচ্ছে। এই ঘটনা ভিন্ন ভিন্ন অঞ্চলের সাংস্কৃতিক মিথস্ক্রিয়ার ফলাফল, যা নৃত্যের প্রভাবে হয়েছে। ভাংরা নাচের এলাকা হচ্ছে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিভক্ত পাঞ্জাব। এটি একই সাথে নৃত্য ও সঙ্গীতের ধরন বলে পরিচিত। এটা প্রাচীন ফসল উৎপাদনের উৎসবের সাথে সম্পর্কিত। ভাংরায় এর সাথে আরও দেখা যায় প্রেম, দেশপ্রেম অথবা সামাজিক ঘটনার উপস্থিতি। ঢোল নামের একটি বাদ্যযন্ত্র ভাংরায় ব্যবহুত হয়। শ্রীলংকার নৃত্যের মধ্যে রয়েছে শয়তান নৃত্য। এই নাচের শিকড় অনেককাল আগের শ্রীলংকান প্রাক বৌদ্ধ সময়কালে। সতর্কতার সাথে এই নৃত্যে ধর্মীয় রীতির পালন করা হয়। ইন্দোনেশিয়ার নৃত্য ইন্দোনেশিয়ার সমৃদ্ধ নৃগোষ্ঠীর সংস্কৃতি ও বৈচিত্রময়তা তুলে ধরে। ইন্দোনেশিয়ায় ১৩০০ এরও বেশি নৃগোষ্ঠী আছে। এ্যাষ্ট্রোনেশিয়ান ও মেলানিসিয়ান জনগোষ্ঠী হতে এই সংস্কৃতি জন্ম নিয়েছে। আফ্রিকা আফ্রিকায় নৃত্য সমাজ ও গোষ্ঠীগুলোর বড় বড় ঘটনার সাথে মিশে আছে। প্রায়ই নৃত্যের মাধ্যমে গোষ্ঠী ও সমাজ তাদের সামাজিক উৎসবের প্রকাশ করে থাকে। কারো জন্ম হলে নৃত্য পরিবেশিত হয়, কেউ মৃত্যুবরণ করলেও তা নৃত্যের মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। যুদ্ধের জন্য নৃত্য আছে, আছে বিয়ের নাচও। ঐতিহ্যবাহী নাচগুলোতে সাংস্কৃতিক নীতির প্রকাশ পায়। এরমধ্যে থাকে ধর্মীয় রীতিনীতি ও যৌনতার মানদন্ড। অবদমিত আবেগকে এই নৃত্যের মাধ্যমে মুক্তভাবে প্রকাশ করা হয়, যেমন শোক। সমাজ বা গোষ্ঠীর সদস্যদের পারস্পারিক সহায়তায় এগিয়ে আসার জন্য উদীপ্ত করে এই সকল নৃত্য। অন্যদিকে লড়াই অথবা শস্য মাড়াই জাতীয় নাচের মাধ্যমে ঐশ্বরিক বা ধর্মীয় আচারকে প্রতিষ্ঠিত করা হয় যাতে করে সামাজিক বন্ধন দৃঢ় হয়। মহাদেশ জুড়ে প্রচুর ভিন্ন ভিন্ন নৃত্য পরিবেশন করা হয়ে থাকে। এই নাচগুলোকে ঐতিহ্যবাহী, নব্য চর্চাকৃত ঐতিহ্য এবং শাস্ত্রীয় নৃত্য হিসেবে শ্রেণিবিভাগ করা যায়। শাস্ত্রীয় নৃত্যের মধ্যে আছে নির্দিষ্ট জনগোষ্ঠীর লোক নৃত্য, ঐতিহ্যবাহী নৃত্য শৈলীর অনুকরণে সাম্প্রতিককালে সৃষ্ট নৃত্যধারা এবং বিদ্যালয় বা ব্যক্তিগতভাবে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত অধিক বিধিবদ্ধ নৃত্য। আফ্রিকান নৃত্যশৈলী নানাভাবে বাইরের বিভিন্ন প্রভাবক দ্বারা প্রভাবিত হয়েছে। ইউরোপীয় ধর্মপ্রচারক ও ঔপনিবেশিক সরকারের কথা এক্ষেত্রে বলা যায়। যাদের কাছে স্থানীয় নৃত্য যৌনানুভূতিপূর্ন অভব্য ধরনের অথবা মনোযোগ বিক্ষেপণকারী বলে মনে হত। যার ফলে তারা স্থানীয় নৃত্যকে নানাভাবে দমিয়ে রাখতে চাইতো। সমসাময়িক আফ্রিকান সংস্কৃতিতে নৃত্য এখনো তার ঐতিহ্যবাহী ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে, তবে নতুন অবয়বে। নৃত্য এখন পরিবেশিত হয় হাসপাতালের উদ্বোধনে, গ্রামীন জনগোষ্ঠীর নতুন অপরিচিত শহরে অভিবাসনের পর বা খিষ্ট্রীয়ান উপাসনালয়ের উৎসবে। ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা অঞ্চলভেদে ইউরোপে লোকনৃত্যের ধরনে ভিন্নতা দেখা যায়। কিছু কিছু লোকনৃত্য শত বছর কিংবা হাজার বছরেরও পুরোনো। যদিও এগুলোর মধ্যে সাধারণ কিছু বৈশিষ্ট্য লক্ষ্য করা যায়, যেমন ক্যারলস নৃত্যে একজন আহ্বানকারীর নেতৃত্বে দলগত অংশগ্রহণের ব্যপারটি। যেখানে পরস্পর হাত ধরাধরি তরে অথবা বাহুর সাথে বাহু যুক্ত করে নির্দিষ্ট সঙ্গীতের ধরনের সাথে নৃত্য থাকে। কিছু নৃত্য , যেমন মেপোল, অনেক জাতীর মধ্যে প্রচলিত। আবার পোলকা বা সেলিধ নৃত্য কোন একটি নির্দিষ্ট জাতী বা সংস্কৃতির সাথে গভীরভাবে প্রোথিত। স্কয়ার নৃত্যের মত কিছু ইউরোপিয়ান নৃত্য নতুন বিশ্বের নিকট পরিচিত হয়ে ওঠার সাথে সাথেই যুক্তরাষ্ট্রর সংস্কৃতির অংশে পরিণত হয়েছে। প্রথমে ইতালী ও তার পরে ফ্রান্সে ব্যালে নাচের প্রসার ঘটে। অভিজাত শ্রেনীর দর্শকদের জন্য সঙ্গীত, কাব্য, নাট্য, গান, পোশাক ও নৃত্যের সমন্বয়ে ব্যালে পরিবেশিত হত। রাজসভার অভিজাত ব্যক্তিরা পরিবেশনায় অংশ নিতেন। চতুর্দশ লুই ছিলেন একজন নর্তক। তার রাজত্বকালে নৃত্য বিধিবদ্ধ নিয়মে আসতে শুরু করে। আনাড়ী অভিজাতদের পরিবর্তে পেশাদার নৃত্যশিল্পীরা পরিবেশনায অংশ নিতে থাকেন। ব্যালে শিক্ষকদের ফ্রান্স সরকার দ্বারা অনুমোদন প্রদান করা শুরু হয়। ১৬৬১ সালে প্যারিসে প্রথম ব্যালে নৃত্য শেখার জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠান যাত্রা শুরু করে। যার নাম ছিল আকাদেমী রয়্যাল দে দানস ( রাজকীয় নৃত্যচর্চা কেন্দ্র)। এই কেন্দ্র হতে প্রথম প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষাপ্রাপ্ত ব্যালে নাচের দল গঠন করা হয়। এই দল কোন নারী নৃত্য শিল্পী ছিলো না। নারী নৃত্যশিল্পী অন্তর্ভুক্ত শুরু হয় ১৬৮১ সালে। বিংশ শতাব্দীর শুরুতে মঞ্চে পরিবেশিত নৃত্য শৈলীতে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আসে, তুলনামূলক ব্যকরণমুক্ত নৃত্য পদ্ধতির বৈশিষ্ট্য উদ্ভাবনের মাধ্যমে। আধুনিক নৃত্য বলতে আমরা যা বুঝি, তারশুরুর দিকের পথপ্রদর্শকরা ছিলের লোয়ী ফুলার, ইসাডোরা ডানকান, ম্যারী উইগম্যান ও রুথ সেইন্ট ডেনিস। এমিল জাকোইস-ডালক্রোজ এমন যন্ত্র তৈরী করেন যেটা সঙ্গীতের সাথে নৃত্যের সম্পর্ককে শিক্ষার্থীদের নিকট সহজভাবে বোধগম্য করে তুলতে পারে। এর নাম হচ্ছে ইয়োরহিথমিকস। এই যন্ত্র আধুনিক নৃত্য ও আধুনিক ব্যালে নৃত্যের প্রসারের জন্য ম্যারী রামবার্ট ও এ ধরনের শিল্পীদের জন্য এক প্রেরণাময় ব্যাপার ছিলো। রুডলফ ষ্টেইনার ও মেরী ষ্টেইনার-ভন সেভার্স ইউরিদমীর পরিবর্ধন করেন, পূর্বের প্রচলিত কেতাবী উপাদানের সাথে মুক্ত প্রকৃতির ধারার মিশ্রণে নৃত্যের পরিবর্তন আনেন। সেইসাথে নৃত্যের নতুন জটিল পরিভাষার প্রচলন ঘটান। ১৯২০ এর দশকে নতুন ধারা ব্যালের গুরুত্বপূর্ন উদ্ভাবক যেমন মার্থা গ্রাহাম ও ডরিস হামফ্রে তাদের কাজ শুরু করেন। এই সময় হতে এক বিস্তৃত ও বৈচিত্রময় নৃত্যশৈলীর বিবর্ধন শুরু হয়। আধুনিক নৃত্য, আফ্রিকান আমেরিকান নৃত্য প্রাত্যহিক জীবনযাত্রার অংশ হয়ে উঠতে শুরু করে, নৃত্য ষ্টুডিও, পেশাদার নৃত্যদল বা নৃত্য শিক্ষা কেন্দ্রগুলির বাইরে নৃত্য হয়ে ওঠে জীবনাচারের অংশ। ট্যাপ নৃত্য, জ্যজ, সুইং নৃত্য, হিপ-হপ, লিন্ডি হপ, ডিসকো প্রভৃতি নৃত্যগুলির রক-এন-রোল ধারার সঙ্গীতের সাথে মিশ্রণের কারণে রক-এন-রোল নৃত্য পুরো বিশ্বে প্রভাব ফেলতে শুরু করে। একবিশ্ব শতকে আভির্ভাব হয় হিপলেট নৃত্যের। যেখানে শাস্ত্রীয় ব্যালের নৃত্য পদ্ধতি আফ্রকান-আমেরিকান নৃত্যের সাথে মিলে নতুন নৃত্যধারার সূচনা করে। লাতিন আমেরিকা লাতিন আমেরিকার সামাজিক জীবন ও সংস্কৃতিতে নৃত্য একটি কেন্দ্রীয স্থান নিয়ে আছে। ব্রাজিলের সাম্ভা, আর্হেন্টিনার ট্যাঙ্গো, কিউবার সালসা সারা দুনিয়ায় জনপ্রিয় যুগল নৃত্য। অন্যান্য জাতীয় নৃত্যগুলিও তাদের দেশের সংস্কৃতির গুরুত্বপূর্ণ অংশ। এই নৃত্যগুলির মধ্যে আছে মেরেনগি, চুকা, জারাবি, জোরোপো, মারিনেরা, কাম্বিয়া, বাছাতা ও আরও কিছু নৃত্য। ঐতিহ্যবাহী উৎসব উদযাপনে এইনব নৃত্যগুলির সংমিশ্রণে উৎসবের আনএন্দর মাত্রা বহুগুণে বাড়িয়ে তোলে। লাতিন আমেরিকার অনেক নৃগোষ্ঠী ও আদিবাসী সংস্কৃতির সমষ্টিগত পরিচিতি বিনির্মাণে নৃত্য এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই অঞ্চলের অনেক আফ্রিকান, ইউরোপীয়ান ও ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠীর সংহতি তৈরীতে নৃত্য ভূমিকা রাখে। লাতিন আমেরিকার ইতিহাসে নির্দিষ্ট ধারার নৃত্য শৈলী যেমন ক্যাপোইরা, এবং নির্দিষ্ট শারিরীক মুদ্রা যেমন কিউব্রাডাস বা শরীরের নিম্নাংশের আন্দোলন বিভিন্ন সময় নিষিদ্ধ হয়েছে আবার উদযাপিতও হয়েছে। শিক্ষা নৃত্যকলা বিষয়ে অনেক উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে কলা ও মানবিকী বিষয়ক শিক্ষাক্রমের অধীনে পড়ার সুযোগ আছে। কিছু বিশ্ববিদ্যালয় নৃত্যে কলা বিভাগে স্নাতক হওয়ার এবং আরও উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের সুযোগ দেয়। নৃত্য বিষয়ে শিক্ষাক্রম বৈচিত্রময় ও বিশাল পরিসরে বিষয় ও পাঠ্যবস্তু নিয়ে তৈরী হয়। এই সকল বিষয়ের মধ্যে যেমন থাকে নৃত্য পরিবেশনা, নৃত্য নির্দেশনা, নৃগোষ্ঠীর নিজস্ব নৃত্যধারা তেমনি আরও থাকে নৃত্য ও শরীরের সম্পর্ক বিষয়ক জ্ঞান, নৃত্যের গঠন ও নৃত্য ব্যবহার করে চিকিৎসা পদ্ধতি বিষয়ক পাঠক্রম। পাঠ বুঝতে সমস্যা হয় এ ধরনের শিশুদের, আচরণগত/আবেগগত সমস্যা সম্পন্ন শিশুদের এবং মনোযোগ প্রদানে মারাত্মক সমস্যা সম্পন্ন শিশুদের গণিতের পাঠ বোঝাতে নৃত্যের সাহায্যে শরীরকে ব্যবহার করার বিষয়টি খুব সাম্প্রতিক সময়ে দেখা যাচ্ছে। পেশা নর্তকী পেশাদার নৃত্যশিল্পীরা সাধারণতঃ চুক্তিভিত্তিক কাজ করে থাকেন। এই চুক্তি নির্দিষ্ট প্রযোজনার জন্যও হতে পারে আবার নির্দিষ্ট সময়ব্যাপী হতে পারে। পেশাদার নৃত্যশিল্পীদের জীবন মূলত ক্রমাগত পরিবর্তনশীল কার্যপরিবেশের সমষ্টি । যে জীবনে আছে তীব্র প্রতিযোগিতারে চাপ আর নিম্ন পারিশ্রমিক । সঙ্গতকারণে পেশাদার নৃত্যশিল্পীদের আর্থিক নিরাপত্তার জন্য বাড়তি আয়ের ব্যবস্থা করতে হয়। যুক্তরাস্ট্রে অনেক পেশাদার নৃত্যশিল্পী বিভিন্ন শ্রম সংগঠনের সাথে যুক্ত(যেমন আমেরিকান গিল্ড অব মিউজিক্যাল আর্টিষ্ট, স্ক্রীণ আ্যক্টরস গিল্ড ও আ্যকটরস ইকুয়িটি এসোসিয়েশন)। এই শ্রম সংগঠনগুলো সদস্যদের কাজের নিরাপদ পরিবেশ ও ন্যুনতম মজুরীর নিশ্চয়তা প্রদান করে। পেশাদার নৃত্যশিল্পীদের শারিরীকভাবে সুঠাম ও সবল হতে হয়। সফল কা্যরিয়ারের জন্য নৃত্য শিল্পীদের বিভিন্ন নৃত্যশৈলীতে পারদর্শী হতে হয়। সেই সাথে থাকতে হয় কারিগরী বিষয়ের উপরে ভালো ধারণা। বিভিন্ন শারিরীক কসরতের উপরে প্রশিক্ষণ থাকাটাও জরুরী, যাতে করে স্বাস্থ্যবান ও শারিরীকভাবে যোগ্য থাকা যায়। শিক্ষক নৃত্য নির্দেশক নৃত্য নির্দেশক হলেন সেই ব্যক্তি যিনি একটি নৃত্যের মধ্যে কি ধরনের নৃত্য হাতের ও পায়ের কাজের মাধ্যমে ফুটিয়ে তোলা হবে , তা নির্ধারণ করেন। বেশিরভাগ নৃত্য নির্দেশক বিশ্ববিদ্যালয় বা এধরনের অন্য প্রতিষ্ঠান হতে প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত। সাধারণত নৃত্য নির্দেশকরা নির্দিষ্ট কোন প্রকল্পের জন্য নিয়োগ পেয়ে থাকেন। তবে এমনও দেখা যায় যে, কোন কোন নৃত্য নির্দেশক পেশাদার নৃত্য দলের সাথে সার্বক্ষণিক নৃত্য নির্দেশক হিসেবে চুক্তিবদ্ধ হয়ে কাজ করেন। প্রতিযোগিতা নৃত্য প্রতিযোগিতায় বা একাধিক বিচারকের সামনে প্রতিযোগিরা নৃত্য পরিবেশন করেন। এধরনের প্রতিযোগিতায় সাধারণত পুরস্কার দেওয়া হয়, কখনো আর্থিক পুরস্কারও থাকে। বেশ কিছু বড় পরিসরের নৃত্য প্রতিযোগিতা আছে। এ প্রতিযোগিতাগুলোকে সাধারণত নৃত্যের ভিন্ন ভিন্ন ধরনের পরিবেশনা করার প্রকৃতি দিয়ে আলাদা করে চেনা যায়। বড় নৃত্য প্রতিযোগিতাগুলোর মধ্যে নিচের প্রতিযোগিতাগুলোর কথা বলা যায় - ড্যান্সস্পোর্ট , বিশেষভাবে বলরুম ও লাতিন নৃত্যের উপরে নজর দেয়। প্রতিযোগিতামূলক নৃত্য,মিলনায়তনে প্রদর্শন উপযোগী নৃত্যের প্রতিযোগিতা, যেখানে সচরাচরএক্রো, ব্যালে, জ্যাজ, হিপ-হপ, লিরিক্যাল, ট্যাপ প্রভৃতি নৃত্য প্রদর্শন করতে হয়। একক ধরনের নৃত্য প্রতিযোগিতা, যেমন হাইল্যান্ড নৃত্য, দলীয় নৃত্য এবং আইরিশ নৃত্য, যেখানে কেবল একটি নৃত্যশৈলী দেখানো যায়। উন্মুক্ত নৃত্য প্রতিযোগিতা, যেকোন ধরনের নৃত্যের প্রতিযোগিতা, এই ধরনের উদাহরণ টেলিভিশন অনুষ্ঠান সুতরাং তুমি মনে কর যে তুমি নাচতে পারো (সো ইউ থিংক ইউ ক্যান ড্যান্স) অলিম্পিক, নৃত্য অলিম্পিক ক্রীড়া হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হতে ১৯৩০ সাল হতে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। এর বাইরে অগুণতি নৃত্য প্রতিযোগিতা আছে যেগুলো টেলিভিশন ও অন্যান্য প্রচারমাধ্যমে প্রচইরত হচ্ছে। গ্যালারি তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ নৃত্য মূল বিষয়ের নিবন্ধ বিনোদন পেশা পরিবেশন শিল্পকলা
https://en.wikipedia.org/wiki/Dance
Dance
Dance is an art form, often classified as a sport, consisting of sequences of body movements with aesthetic and often symbolic value, either improvised or purposefully selected. Dance can be categorized and described by its choreography, by its repertoire of movements or by its historical period or place of origin. Dance is typically performed with musical accompaniment, and sometimes with the dancer simultaneously using a musical instrument themselves. An important distinction is to be drawn between theatrical and participatory dance, although these two categories are not always completely separate; both may have special functions, whether social, ceremonial, competitive, erotic, martial, sacred or liturgical. Other forms of human movement are sometimes said to have a dance-like quality, including martial arts, gymnastics, cheerleading, figure skating, synchronized swimming, marching bands, and many other forms of athletics. Dance is not solely restricted to performance, as dance is used as a form of exercise and occasionally training for other sports and activities. Dance has become a sport for some, with dancing competitions found across the world exhibiting various different styles and standards. Dance has an aesthetic appeal to many people.
1232
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%89%E0%A7%8E%E0%A6%B8%E0%A6%AC
উৎসব
উৎসব বলতে সাধারণত সামাজিক, ধর্মীয় এবং ঐতিহ্যগত প্রেক্ষাপটে পালিত আনন্দ অনুষ্ঠানকে বোঝায়। বাংলাদেশে উৎসবের সময় জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে সকল মানুষ আনন্দে মেতে ওঠে। বাঙালীরা উৎসবপ্রিয় জাতি। বাংলাদেশে উৎসবকে ঘিরে "বাঙালির বারো মাসে তেরো পার্বণ" ও "ধর্ম যার যার, উৎসব সবার"-এর মতন স্লোগানও আছে। বাংলায় প্রচলিত লোকায়িত উৎসবের মধ্যে রয়েছে পয়লা বৈশাখ, পহেলা ফাল্গুন, চৈত্র সংক্রান্তি, নবান্ন, বর্ষা উৎসব, ইত্যাদি। মুসলমান ধর্মাবলম্বীদের ধর্মীয় উৎসবের মধ্যে রয়েছে ঈদুল ফিতর, রমযান, ঈদে মিলাদুন্নবি ও ঈদুল আজহা। এছাড়াও বাঙালি মুসলমানদের মধ্যে প্রচলিত লোক সাংস্কৃতিক উৎসবের মধ্যে রয়েছে বিশ্ব ইজতেমা, চাঁদ রাত, শবে বরাত, সাকরাইন, নৌকা বাইচ, আখেরী চাহার শোম্বা, ইত্যাদি পালন করা হয়। বাংলার হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের বার্ষিক উৎসবের মধ্যে রয়েছে দুর্গা পূজা, লক্ষ্মী পূজা ও কালি পূজা (দীপাবলি) ইত্যাদিসহ গাজন, চরক পূজা, জামাইষষ্ঠীর মতন সামাজিক উৎসব পালন করে। বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীরা পালন করে বুদ্ধ পূর্ণিমা, মাঘী পূর্ণিমা, আষাঢ়ি পূর্ণিমা ও প্রবারণা পূর্ণিমা। বাংলার বৌদ্ধ কঠিন চীবর দান ও মধু পূর্ণিমাও পালন করে থাকেন। বাঙালি খ্রীষ্টানরা পালন করে বড়দিন ও পুনরুত্থান পার্বণ পালন করে। এ ছাড়াও বিভিন্ন উৎসব পালন করা হয়। তথ্যসূত্র সামাজিক ঘটনা
https://en.wikipedia.org/wiki/Festival
Festival
A festival is an event celebrated by a community and centering on some characteristic aspect or aspects of that community and its religion or cultures. It is often marked as a local or national holiday, mela, or eid. A festival constitutes typical cases of glocalization, as well as the high culture-low culture interrelationship. Next to religion and folklore, a significant origin is agricultural. Food is such a vital resource that many festivals are associated with harvest time. Religious commemoration and thanksgiving for good harvests are blended in events that take place in autumn, such as Halloween in the northern hemisphere and Easter in the southern. Festivals often serve to fulfill specific communal purposes, especially in regard to commemoration or thanking to the gods, goddesses or saints: they are called patronal festivals. They may also provide entertainment, which was particularly important to local communities before the advent of mass-produced entertainment. Festivals that focus on cultural or ethnic topics also seek to inform community members of their traditions; the involvement of elders sharing stories and experience provides a means for unity among families. Attendants of festivals are often motivated by a desire for escapism, socialization and camaraderie; the practice has been seen as a means of creating geographical connection, belonging and adaptability.
1233
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%96%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%A8%E0%A6%BE
খেলনা
খেলাধূলায় ব্যবহৃত সামগ্রীই খেলনা। সাধারণতঃ শিশুরা আর ঘরে পোষা জীবজন্তুরাই খেলনা নিয়ে খেলে, যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের বা বন্য প্রাণীদের খেলনা নিয়ে খেলা অস্বাভাবিক কিছু নয়। খেলনা হিসেবে প্রচুর কিছু বাণিজ্যিকভাবে তৈরি করা হয়। আবার খেলার জন্য তৈরি করা হয়নি এমন যে কোন কিছুকেই খেলনা হিসেবে কল্পনা করে তা নিয়ে কেউ খেলতে পারে — ঘরের যে কোন জিনিসকে এরোপ্লেন ভেবে নিয়ে 'উড়িয়ে' নিয়ে যেতে পারে একটি শিশু, আবার একটা পাইন কোনকে থাপড়ে, চাপড়ে, তাড়া করে, শূন্যে ছুঁড়ে খেলতে পারে কোন প্রাণী। কিছু কিছু খেলনা আবার প্রাথমিকভাবে শুধুমাত্র খেলনা সংগ্রহকারীর জন্যই তৈরি করা হয়, খেলার জন্য নয়। ইতিহাস খেলনার সৃষ্টি প্রাগৈতিহাসিক কালে; বিভিন্ন প্রত্নতাত্ত্বিক স্থানে শিশুদের খেলনার উপকরণ খুঁজে পাওয়া গেছে। আধুনিক খেলনা খেলনার চাহিদা ও বাণিজ্যিক উৎপাদন খেলনার ধরণ খেলনা নানা ধরনের হয়ে থাকে। শিক্ষামূলক খেলনা শিক্ষামূলক খেলনা তথ্যসূত্র খেলনা খেলা
https://en.wikipedia.org/wiki/Toy
Toy
A toy or plaything is an object that is used primarily to provide entertainment. Simple examples include toy blocks, board games, and dolls. Toys are often designed for use by children, although many are designed specifically for adults and pets. Toys can provide utilitarian benefits, including physical exercise, cultural awareness, or academic education. Additionally, utilitarian objects, especially those which are no longer needed for their original purpose, can be used as toys. Examples include children building a fort with empty cereal boxes and tissue paper spools, or a toddler playing with a broken TV remote control. The term "toy" can also be used to refer to utilitarian objects purchased for enjoyment rather than need, or for expensive necessities for which a large fraction of the cost represents its ability to provide enjoyment to the owner, such as luxury cars, high-end motorcycles, gaming computers, and flagship smartphones. Playing with toys can be an enjoyable way of training young children for life experiences. Different materials like wood, clay, paper, and plastic are used to make toys. Newer forms of toys include interactive digital entertainment and smart toys. Some toys are produced primarily as collectors' items and are intended for display only. The origin of toys is prehistoric; dolls representing infants, animals, and soldiers, as well as representations of tools used by adults, are readily found at archaeological sites. The origin of the word "toy" is unknown, but it is believed that it was first used in the 14th century. Toys are mainly made for children. The oldest known doll toy is thought to be 4,000 years old. Playing with toys is an important part of aging. Younger children use toys to discover their identity, help with cognition, learn cause and effect, explore relationships, become stronger physically, and practice skills needed in adulthood. Adults on occasion use toys to form and strengthen social bonds, teach, help in therapy, and to remember and reinforce lessons from their youth. A toymaker is the name of someone who makes toys.
1234
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A6%96
শখ
শখ মানুষের চিত্ত-বিনোদনের অন্যতম উপাদান। মানুষ তার পেশা বাদে অন্য যে পেশায় কাজ করে আনন্দ লাভ করে তাই শখ ৷ শখ এমন একটি নিয়মিত ক্রিয়াকলাপ হিসাবে বিবেচিত যা উপভোগের জন্য করা হয়। সাধারণত কারও অবসর সময়ে শখের কাজ গুলো করা হয়ে থাকে। শখের মধ্যে থিমযুক্ত আইটেমগুলি এবং বস্তু সংগ্রহ করা, সৃজনশীল এবং শৈল্পিক কর্মকান্ডে নিযুক্ত হওয়া, খেলাধুলা করা বা অন্যান্য বিনোদনমূলক কর্মকান্ড উপভোগ করা। কারো যদি কোন বিষয়ে শখ থাকে এবং সেই ক্ষেত্রে সে নিয়মিত হয় তবে এর উপর সে যথেষ্ট দক্ষতা এবং জ্ঞান অর্জনে উৎসাহী হয়। নবীনদের আগ্রহ এবং মনের বিকাশের শখের ধারাগুলো পরিবর্তিত হয়ে থাকে  এছাড়া সমাজে দেখা দেখি শখ পরিবর্তিত হয়ে তাকে যেমন স্ট্যাম্প সংগ্রহ। বিংশ শতাব্দীতে ডাকটিকিট সংগ্রহগুলি জনপ্রিয় ছিল কারণ ডাক ব্যবস্থা যোগাযোগের মূল মাধ্যম ছিল, যখন প্রযুক্তিগত অগ্রগতির অনুসরণে আজকাল ভিডিও গেমগুলি বেশি জনপ্রিয়। উনিশ শতকের অগ্রযাত্রা উৎপাদন এবং প্রযুক্তি শখের সাথে জড়িত থাকার জন্য শ্রমিকদের আরও অবসর সময় দিয়েছিল। এ কারণে, সময়ের সাথে শখগুলিতে বিনিয়োগের মানুষের প্রচেষ্টা বেড়েছে। বিভিন্ন ধরনের শখের তালিকা বিভিন্ন জিনিস সংগ্রহ (যেমন বিভিন্ন দেশের মুদ্রা, ডাকটিকেট ইত্যাদি) প্রাণী পোষা বাগান করা মাছ ধরা বস্তু তৈরি সৃজনশীল লেখালেখি (যেমনঃ কবিতা, গল্প, উপন্যাস ইত্যাদি) চিত্রাঙ্কন ভ্রমণ বই পড়া ছবি তোলা ইত্যাদি তথ্যসূত্র শখ মূল বিষয়ের নিবন্ধ চিত্তবিনোদন ব্যক্তিগত জীবন
https://en.wikipedia.org/wiki/Hobby
Hobby
A hobby is considered to be a regular activity that is done for enjoyment, typically during one's leisure time. Hobbies include collecting themed items and objects, engaging in creative and artistic pursuits, playing sports, or pursuing other amusements. Participation in hobbies encourages acquiring substantial skills and knowledge in that area. A list of hobbies changes with renewed interests and developing fashions, making it diverse and lengthy. Hobbies tend to follow trends in society. For example, stamp collecting was popular during the nineteenth and twentieth centuries as postal systems were the main means of communication; as of 2023, video games became more popular following technological advances. The advancing production and technology of the nineteenth century provided workers with more leisure time to engage in hobbies. Because of this, the efforts of people investing in hobbies has increased with time. Hobbyists may be identified under three sub-categories: casual leisure which is intrinsically rewarding, short-lived, pleasurable activity requiring little or no preparation, serious leisure which is the systematic pursuit of an amateur, hobbyist, or volunteer that is substantial, rewarding and results in a sense of accomplishment, and finally project-based leisure which is a short-term, often one-off, project that is rewarding.
1237
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE
সংখ্যা
সংখ্যা হলো পরিমাপের একটি বিমূর্ত ধারণা । সংখ্যা প্রকাশের প্রতীকগুলিকে বলা হয় অঙ্ক । এর প্রকৃত উদাহরণগুলি হল স্বাভাবিক সংখ্যা ১, ২, ৩, ৪ এবং আরও অনেক কিছু। ইতিহাস সংখ্যা সংখ্যাগুলিকে সংখ্যা থেকে আলাদা করা উচিত, চিহ্নগুলি সংখ্যার প্রতিনিধিত্ব করতে ব্যবহৃত হয়৷ মিশরীয়রা প্রথম সাইফার্ড সংখ্যা পদ্ধতি উদ্ভাবন করেছিল এবং গ্রীকরা তাদের গণনা সংখ্যাকে আয়োনিয়ান এবং ডরিক বর্ণমালায় ম্যাপ করে অনুসরণ করেছিল। রোমান সংখ্যা, একটি সিস্টেম যা রোমান বর্ণমালার অক্ষরগুলির সংমিশ্রণ ব্যবহার করে, 14 শতকের শেষের দিকে উচ্চতর হিন্দু-আরবি সংখ্যা পদ্ধতির প্রসার না হওয়া পর্যন্ত ইউরোপে প্রভাবশালী ছিল এবং হিন্দু-আরবি সংখ্যা পদ্ধতি প্রতিনিধিত্ব করার জন্য সবচেয়ে সাধারণ পদ্ধতি হিসাবে রয়ে গেছে। আজ বিশ্বের সংখ্যা। সিস্টেমের কার্যকারিতার চাবিকাঠি ছিল শূন্যের প্রতীক, যা 500 খ্রিস্টাব্দের দিকে প্রাচীন ভারতীয় গণিতবিদরা তৈরি করেছিলেন। সংখ্যা পদ্ধতি সংখ্যার শ্রেণিবিভাগ সংখ্যাঃ বাস্তব সংখ্যা ও অবাস্তব সংখ্যা; বাস্তব সংখ্যাঃ মূলদ সংখ্যা ও অমূলদ সংখ্যা; মূলদ সংখ্যাঃ পূর্ণ সংখ্যা ও ভগ্নাংশ সংখ্যা;পূর্ণ সংখ্যাঃ ধনাত্মক পূর্ণ সংখ্যা বা স্বাভাবিক সংখ্যা, শূন্য ও ঋণাত্মক পূর্ণ সংখ্যা ; স্বাভাবিক সংখ্যা পূর্ণ সংখ্যা মূলদ সংখ্যা ও অমূলদ সংখ্যা বাস্তব সংখ্যা জটিল সংখ্যা √-1=i জটিল সংখ্যার প্রতীক সংখ্যা ধারণার উৎপত্তি প্রস্তর যুগ বর্তমান গণিতের জন্ম হয়েছে গণনা থেকে। গণনার ধারণা থেকেই প্রথম সংখ্যা ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তা অনুভূত হয়েছিল যদিও সংখ্যার জন্ম হয়েছে অনেক সময়ের ব্যবধানে। প্রাচীন প্রস্তর যুগে মানুষ যখন গুহায় বসবাস করতো তখনও এক-দুই পর্যন্ত গণনা চালু ছিল বলে ধারণা করা হয়। তখন পারিবারিক বা সামাজিক জীবন ভালো করে শুরু না হলেও পদার্থের রূপ সম্বন্ধে তারা ওয়াকিবহাল ছিল। নব্য প্রস্তর যুগে মানুষ খাদ্য আহরণ, উৎপাদন এবং সঞ্চয় করতে শুরু করে। মৃৎ, কাষ্ঠ এবং বয়ন শিল্পের প্রসার ঘটে যার অনেক নমুনা বর্তমানে আবিষ্কৃত হয়েছে। অধিকাংশের মতে এ সময়েই ভাষার বিকাশ ঘটে। তবে ভাষা যতটা বিকশিত হয়েছিল তার তুলনায় সংখ্যার ধারণা ছিল বেশ অস্পষ্ট। সংখ্যাগুলো সর্বদাই বিভিন্ন বস্তুর সাথে সংশ্লিষ্ট থাকতো। যেমন, পশুটি, দুটি হাত, একজোড়া ফল, এক হাঁড়ি মাছ, অনেক গাছ, সাতটি তারা ইত্যাদি। এমনকি অস্ট্রেলিয়া, আমেরিকা এবং আফ্রিকার অনেক গোত্র আজ থেকে মাত্র দুশো বছর আগেও এ অবস্থায় ছিল। বিশুদ্ধ সংখ্যার ধারণা বিশুদ্ধ সংখ্যা বলতে বস্তু নিরপেক্ষ সংখ্যার ধারণাকে বুঝায়। প্রস্তর যুগ পেরিয়ে আরও অনেক পরে এ ধারণার বিকাশ ঘটেছে। এক বা দুইয়ের গণ্ডী পেরিয়ে আরও বড় সংখ্যা নির্দেশ করতে প্রথম কেবল যোগ ব্যবহার করা হতো। পরে ধীরে ধীরে যোগ এবং গুণনের সাহায্যে ছোট থেকে বড় সংখ্যার দিকে যাওয়া শুরু হয়। দুটি অস্ট্রেলীয় গোত্রের উদাহরণ এখানে উল্লেখ্য: মারে রিভার গোত্র: এনিয়া (এক), পেচেভাল (দুই), পেচেভাল-এনিয়া (তিন), পেচেভাল-পেচেভাল (চার)। কামিলা রোই গোত্র: মাল (এক), বুলান (দুই), গুলিবা (তিন), বুলান-বুলান (চার), বুলান-গুলিবা (পাঁচ), গুলিবা-গুলিবা (ছয়)। সংখ্যার ধারণা স্পষ্ট হতে শুরু করে বাণিজ্যের প্রসারের সাথে সাথে। কারণ এ সময় হিসাব সংরক্ষণ প্রক্রিয়ার প্রয়োজন পড়ে এবং এক গোত্রের সাথে আরেক গোত্রের তথ্যের আদান প্রদান জরুরি হয়ে উঠে। একটি স্পষ্ট সংখ্যা ধারণার উদাহরণ হিসেবে বাংলা সংখ্যা পদ্ধতির কথা বলা যেতে পারে। দশমিক প্রণালী ব্যবহার করে এখানে সংখ্যা গণনা করা হয়ে থাকে। এক থেকে দশ পর্যন্ত হল মূল সংখ্যা। সংখ্যাকে বিভিন্ন ব্যবস্থায় প্রকাশ করা সম্ভব: দশমিক ব্যবস্থা এই ব্যবস্থায় সংখ্যার একেকটি অঙ্ক দশের এককটি গুণিতক। অনেক একককে দশের বিভিন্ন গুণিতকে প্রকাশ করার জন্য বিশেষ উপসর্গ আছে: কিলো (kilo) মেগা (Mega) গিগা (Giga) টেরা (Tera) পেটা (Peta) এক্সা (Exa) জেত্তা (Zetta) ইয়ত্তা (Yotta) ডেসি (Deci) সেন্টি (Centi) মিলি (Milli) মাইক্রো (Micro) ন্যানো (Nano) পিকো (Pico) ফেম্টো (Femto) অ্যাটো (Eto) জেপ্টো (Zepto) বাইনারি ব্যবস্থা বাইনারি সংখ্যা ব্যবস্থায় শুধু দুইটি অঙ্ক, ০ ও ১ ব্যবহার করা হয়। যেমন, দশমিক ৬ সংখ্যাটি বাইনারিতে প্রকাশিত হবে ১১০ হিসাবে। প্রতিটি অবস্থানের গুরুত্ব (weight) ২ করে, অর্থাৎ ৬ = ১* ২২+১* ২১+১* ২০। এই সংখ্যা পদ্ধতির সুবিধা হল ইলেক্ট্রনিক বর্তনীতে খুব সহজেই বাইনারি সংখ্যার হিসাব করা যায়, ফলে কম্পিউটার ও ডিজিটাল বর্তনীতে এই সংখ্যা ব্যবস্থার ব্যাপক প্রচলন রয়েছে। আরও দেখুন সংখ্যার তালিকা জটিল সংখ্যা ভৌত ধ্রুবক পাই মৌলিক সংখ্যা অদিক রাশি তথ্যসূত্র সংখ্যা মূল বিষয়ের নিবন্ধ গ্রুপতত্ত্ব গাণিতিক বস্তু
https://en.wikipedia.org/wiki/Number
Number
A number is a mathematical object used to count, measure, and label. The most basic examples are the natural numbers 1, 2, 3, 4, and so forth. Numbers can be represented in language with number words. More universally, individual numbers can be represented by symbols, called numerals; for example, "5" is a numeral that represents the number five. As only a relatively small number of symbols can be memorized, basic numerals are commonly organized in a numeral system, which is an organized way to represent any number. The most common numeral system is the Hindu–Arabic numeral system, which allows for the representation of any non-negative integer using a combination of ten fundamental numeric symbols, called digits. In addition to their use in counting and measuring, numerals are often used for labels (as with telephone numbers), for ordering (as with serial numbers), and for codes (as with ISBNs). In common usage, a numeral is not clearly distinguished from the number that it represents. In mathematics, the notion of number has been extended over the centuries to include zero (0), negative numbers, rational numbers such as one half ( 1 2 ) {\displaystyle \left({\tfrac {1}{2}}\right)} , real numbers such as the square root of 2 ( 2 ) {\displaystyle \left({\sqrt {2}}\right)} and π, and complex numbers which extend the real numbers with a square root of −1 (and its combinations with real numbers by adding or subtracting its multiples). Calculations with numbers are done with arithmetical operations, the most familiar being addition, subtraction, multiplication, division, and exponentiation. Their study or usage is called arithmetic, a term which may also refer to number theory, the study of the properties of numbers. Besides their practical uses, numbers have cultural significance throughout the world. For example, in Western society, the number 13 is often regarded as unlucky, and "a million" may signify "a lot" rather than an exact quantity. Though it is now regarded as pseudoscience, belief in a mystical significance of numbers, known as numerology, permeated ancient and medieval thought. Numerology heavily influenced the development of Greek mathematics, stimulating the investigation of many problems in number theory which are still of interest today. During the 19th century, mathematicians began to develop many different abstractions which share certain properties of numbers, and may be seen as extending the concept. Among the first were the hypercomplex numbers, which consist of various extensions or modifications of the complex number system. In modern mathematics, number systems are considered important special examples of more general algebraic structures such as rings and fields, and the application of the term "number" is a matter of convention, without fundamental significance.
1238
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%89%E0%A6%AA%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF
উপপাদ্য
উপপাদ্য হলো এক প্রকারের প্রস্তাবনা, যা কিছু প্রাথমিক ধারণার ভিত্তিতে প্রমাণ করা হয়। গণিতের ভাষায়, উপপাদ্যের দুইটি অংশ রয়েছে - আনুষ্ঠানিক ভাবে কিছু প্রাক-ধারণা (assumption) এর উল্লেখ। একটি প্রস্তাবনা, যা উপরিউক্ত প্রাক-ধারণার ভিত্তিতে প্রমাণ করতে হবে। উপপাদ্যকে গাণিতিক সমীকরণের সাহায্যে প্রকাশ করা যায় তবে বাংলা,ইংরেজির মত সাধারণ ভাষাতেও প্রকাশ করা যায়। বেশিভাগ উপপাদ্যও পূর্বের কোনো হাইপোথিসিসের উপর নির্ভরশীল। যেমন "যদি ক সত্য হয় তবে খ সত্য",এই উপপাদ্যটিতে বলা হয়নি "খ" সত্য,এখানে বলা হয়েছে "খ" সত্য হবেই যদি "ক" সত্য হয়। এখানে ক হলো হাইপোথিসিস এবং খ হলো সিদ্ধান্ত। উপপাদ্যকে প্রায়ই "তুচ্ছ","কঠিন","গভীর" এমনকি "সুন্দর" উপাধি দেয়া হয়। এ ধরনের উপাধি মানুষ থেকে মানুষে পরিবর্তিত হয়, এমনকি সময়ের সাথে সাথেও পরিবর্তিত হয়। যেমন আরো সহজ প্রমাণ আবিষ্কৃত হলে একটি "কঠিন" উপপাদ্য "তুচ্ছ" উপাধি পেতে পারে। "গভীর" উপপাদ্যগুলো খুব সাধারণ ভাবে বর্ণনা করা হয় কিন্তু সেগুলোর প্রমাণে আশ্চর্যজনক ভাবে গণিতের বিভিন্ন জটিল অংশের সংযোগ থাকতে পারে, "ফের্মার শেষ উপপাদ্য" এধরনের উপপাদ্যের একটি পরিচিত উদাহরণ। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী রিচার্ড ফেইনম্যানের মতে একটি উপপাদ্য প্রমাণ করা যত কঠিনই হোক না কেনো প্রমাণ করার পর সেটা গণিতবিদদের নিকট তুচ্ছ। ফলে গাণিতিক স্বত্ত্বা দুই রকমেরঃ তুচ্ছ এবং অপ্রমাণিত। গণিতবিদ রোনাল্ড গ্রাহাম ধারণা করেন প্রতি বছর প্রায় ২ লাখ ৫০ হাজার গাণিতিক উপপাদ্য প্রকাশিত হয়। তথ্যসূত্র জ্যামিতি যৌক্তিক পরিণাম যৌক্তিক রাশি গাণিতিক প্রমাণ গাণিতিক পরিভাষা বিবৃতি যুক্তিবিজ্ঞানের ধারণা
https://en.wikipedia.org/wiki/Theorem
Theorem
In mathematics and formal logic, a theorem is a statement that has been proven, or can be proven. The proof of a theorem is a logical argument that uses the inference rules of a deductive system to establish that the theorem is a logical consequence of the axioms and previously proved theorems. In mainstream mathematics, the axioms and the inference rules are commonly left implicit, and, in this case, they are almost always those of Zermelo–Fraenkel set theory with the axiom of choice (ZFC), or of a less powerful theory, such as Peano arithmetic. Generally, an assertion that is explicitly called a theorem is a proved result that is not an immediate consequence of other known theorems. Moreover, many authors qualify as theorems only the most important results, and use the terms lemma, proposition and corollary for less important theorems. In mathematical logic, the concepts of theorems and proofs have been formalized in order to allow mathematical reasoning about them. In this context, statements become well-formed formulas of some formal language. A theory consists of some basis statements called axioms, and some deducing rules (sometimes included in the axioms). The theorems of the theory are the statements that can be derived from the axioms by using the deducing rules. This formalization led to proof theory, which allows proving general theorems about theorems and proofs. In particular, Gödel's incompleteness theorems show that every consistent theory containing the natural numbers has true statements on natural numbers that are not theorems of the theory (that is they cannot be proved inside the theory). As the axioms are often abstractions of properties of the physical world, theorems may be considered as expressing some truth, but in contrast to the notion of a scientific law, which is experimental, the justification of the truth of a theorem is purely deductive.
1239
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8B%E0%A6%A3%E0%A6%AE%E0%A6%BF%E0%A6%A4%E0%A6%BF
ত্রিকোণমিতি
ত্রিকোণমিতি গণিতের একটি শাখা, যাতে ত্রিভুজের কোণ, বাহু ও তাদের মধ্যকার সম্পর্ক ব্যবহার করে বিভিন্ন সমস্যার সমাধান করা হয়। ত্রিকোণমিতি শব্দের ইংরেজি প্রতিশব্দ হচ্ছে Trigonometry। এই শব্দটি আবার গ্রিক শব্দ trigōnon (ত্রিভুজ) এবং metron (পরিমাপ) থেকে উদ্ভূত। বিশেষ করে ত্রিভুজের তিনটি কোণের অপেক্ষকগুলো নানা পরিমাপের কাজে লাগানো যায়। ত্রিভুজের প্রতিটি কোণের ছয় প্রকারের অপেক্ষক বা ফাংশন থাকে। যথা সাইন (sine), কোসাইন (cosine), ট্যাঞ্জেন্ট (tangent), কোট্যাঞ্জেণ্ট (cotangent), সেক্যাণ্ট (secant) এবং কোসেক্যাণ্ট (cosecant)। এগুলো ব্যবহার করে ত্রিভুজের কোণ ও বাহুর দৈর্ঘ্য হিসাব করা হয়। ত্রিকোণমিতির অপেক্ষকগুলো বেশ গুরুত্বপূর্ণ। কারণ এগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন মানের পাল্লার প্রতিরূপ দেয়া যায় বা বারবার পুনরাবৃত্ত হয়। এগুলো পুনরাবৃত্ত প্রতিভাসের প্রতিরূপে, যেমন সরল দোলকের গতি অথবা পরিবর্তী তড়িৎ প্রবাহের বিশ্লেষণে উদ্ভূত হয়। ত্রিকোণমিতির ব্যবহার করে এক বিশাল ক্ষেত্রফলের জালিকা পাওয়া যায় যা সাধারণ পরিমাপ পদ্ধতি ব্যবহার করে মাপা যায় না। ইতিহাস ত্রিকোণমিতির জন্ম প্রাচীন মিশরে হলেও এর আদি উদ্ভাবক একজন গ্রিক জ্যোতির্বিদ যার নাম হিপারকাস। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় শতকে গ্রিক হিপারকাস গ্রহ-নক্ষত্র ও তাদের মধ্যবর্তী বেগ এবং দুরত্ব নির্ণয় ও বিচার করতে গিয়ে এই বিদ্যার চর্চা শুরু করেন। তিনি কাজ করতেন আলেকজান্দ্রিয়ার একটি জাদুঘরে। তবে আমরা বর্তমান যুগে ‘থেটা’, ‘সাইন’, ‘কস’, ‘কোসাইন’, ‘কোসেক’ ইত্যাদি দিয়ে যে ত্রিকোণমিতি করে থাকি তার উদ্ভাবক মুসলিম গণিতবিদেরা। নবম খ্রিষ্টাব্দে আবু আবদুল্লাহ আল-বাতানি, হাবাস আল-হাসিব ও আবুল ওয়াফা আল-বুজানি নামের তিন গণিতবিদের যৌথ উদ্যোগের ফসল আধুনিক ত্রিকোণমিতি। তবে তারা গ্রিক জ্যোতির্বিদ হিপারকাসের মূল ধারণার ওপর ভিত্তি করেই এ বিষয়টিকে আরও আধুনিক করে গড়ে তুলেছিলেন। ত্রিকোণমিতিক অনুপাত যদি ত্রিভুজের একটি কোণ সমকোণ হয় এবং অপর কোণের মান জানা থাকে তবে তৃতীয় কোণের পরিমাপ নির্ণয় করা যায়। এবার আমরা জানি ত্রিভুজের তিন কোনের সমষ্টি ১৮০ ডিগ্রি। কাজেই সমকোণ বাদে বাকি কোণদ্বয়ের সমষ্টি ৯০ ডিগ্রি। তিনটি কোণের পরিমাপ জানা থাকলে ত্রিভুজের বাহুত্রয়ের পরিমাপের নির্ণয় করা যায়। আর যে কোনো এক বাহুর দৈর্ঘ্য জানা থাকলে বাকি বাহুর দৈর্ঘ্যও জানা যায়। এই অনুপাতগুলো জানা যায় কোন θ এর ত্রিকোণোমিতীয় অপেক্ষক বা ফাংশন থেকে। সাইন: এটি ত্রিভুজের লম্ব ও অতিভুজের অনুপাত প্রকাশ করে কোসাইন: এটি ত্রিভুজের ভূমি ও অতিভুজের অনুপাত প্রকাশ করে ট্যানজেন্ট: এটি ত্রিভুজের লম্ব ও ভূমির অনুপাত প্রকাশ করে এই ফাংশনগুলোর গুণোত্তর বিপরীত ফাংশনগুলোকে যথাক্রমে কোসেকেন্ট (cosec বা csc), সেকেন্ট (sec) এবং কোট্যানজেন্ট (cot) বলা হয়। একক বৃত্ত ও সাধারণ ত্রিকোণমিতিক মানসমূহ বাস্তব ও জটিল চলকের ত্রিকোণমিতিক ফাংশন ত্রিকোণমিতিক ফাংশনের লেখচিত্র নিচের ছকে ৬টি প্রধান ত্রিকোণমিতিক ফাংশনের রেখচিত্রের বৈশিষ্ট্য দেওয়া হলো: বিপরীত ত্রিকোণমিতিক ফাংশন অভেদসমূহ ত্রিভুজ সম্পর্কিত অভেদ সাইন সূত্র সাইন নিয়ম অনুসারে যে কোনো ত্রিভুজে: যেখানে হচ্ছে ত্রিভুজটির ক্ষেত্রফল এবং R হল ত্রিভুজটির পরিবৃত্তের ব্যাসার্ধ। কোসাইন সূত্র কোসাইন নিয়ম (বা কস সূত্র) আসলে পিথাগোরাসের সূত্রের সম্প্রসারিত রূপ। এ সূত্র অনুসারে: বা, ট্যাঞ্জেণ্টের সূত্র ক্ষেত্রফল দুটি বাহু a ও b এবং এদের মধ্যবর্তী কোণ C হলে ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল কোণের সাইন এবং বাহুদ্বয়ের গুণফলের অর্ধেক। হিরনের সূত্রের সাহায্যেও ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল নির্ণয় করা যায়। ত্রিভুজের তিন বাহুর দৈর্ঘ্য যথাক্রমে a, b ও c হলে ত্রিভুজের অর্ধপরিসীমা = সুতরাং ত্রিভুজের ক্ষেত্রফল = যেখানে R হল ত্রিভুজটির পরিবৃত্তের ব্যাসার্ধ। ত্রিকোণমিতিক অভেদ পিথাগোরাসীয় অভেদ নিচের ত্রিকোণমিতিক অভেদগুলো পিথাগোরাসের সূত্রের সাথে সম্পর্কিত এবং যে কোনো মান গ্রহণ করতে পারে। অয়লারের সূত্র তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জি বহিঃসংযোগ ত্রিকোণমিতি
https://en.wikipedia.org/wiki/Trigonometry
Trigonometry
Trigonometry (from Ancient Greek τρίγωνον (trígōnon) 'triangle' and μέτρον (métron) 'measure') is a branch of mathematics concerned with relationships between angles and side lengths of triangles. In particular, the trigonometric functions relate the angles of a right triangle with ratios of its side lengths. The field emerged in the Hellenistic world during the 3rd century BC from applications of geometry to astronomical studies. The Greeks focused on the calculation of chords, while mathematicians in India created the earliest-known tables of values for trigonometric ratios (also called trigonometric functions) such as sine. Throughout history, trigonometry has been applied in areas such as geodesy, surveying, celestial mechanics, and navigation. Trigonometry is known for its many identities. These trigonometric identities are commonly used for rewriting trigonometrical expressions with the aim to simplify an expression, to find a more useful form of an expression, or to solve an equation.
1240
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A6%82%E0%A6%96%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8
পরিসংখ্যান
পরিসংখ্যান বা রাশিবিজ্ঞান (ইংরেজি ভাষায়: Statistics) এক ধরনের গাণিতিক বিজ্ঞান (Mathematical Science) যা মূলত উপাত্ত সংগ্রহ, বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা ও উপাত্ত সহজে পরিবেশন নিয়ে কাজ করে। বিজ্ঞান ও সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক এবং আরো নানা শাখায় পরিসংখ্যানের ব্যবহার রয়েছে। উপাত্ত বিশ্লেষন করে তা থেকে তথ্যসমৃদ্ধ সিদ্ধান্ত (informed decision) গ্রহণে পরিসংখ্যানের ভূমিকা অপরিহার্য। যে কোনো ধরনের গবেষণার জন্য পরিসংখ্যান এর মৌলিক জ্ঞান থাকা আবশ্যক। তবে জ্ঞাত বা অজ্ঞাতসারে পরিসংখ্যানের অপব্যবহারও হয়ে থাকে। কর্মপরিধি যারা পরিসংখ্যানের চর্চা করেন তাদেরকে সাধারনভাবে পরিসংখ্যানবিদ বলা হয়। পরিসংখ্যানের সমস্যা গুলো সাধারনত কোন নির্দিষ্ট গোষ্ঠী বা সমষ্টি নিয়ে আবর্তিত হয়। তথ্যের প্রাপ্যতা বা ব্যবস্থাপনা যোগ্যতার ওপর ভিত্তি করে সেই সমষ্টির প্রত্যেককে নিয়ে অথবা তার একটা অংশকে নিয়ে কোন চয়ন পদ্ধতিতে বিশ্লেষন করা হয়। উৎপত্তি ও ক্রমবিকাশ‌ পরিসংখ্যানের ইংরেজি 'Statistics' শব্দটি খুব সম্ভবত ল্যাটিন শব্দ statisticum collegium, ইতালীয় শব্দ statista বা জার্মান শব্দ statistik হতে উৎপত্তি হয়েছে। 'Statuss' এবং 'Statistik' শব্দের অর্থ রাষ্ট্র আর 'Statista' শব্দের অর্থ রাষ্ট্রের কার্যাবলী । এ থেকে বুঝা যায় যে রাষ্ট্রের কাজ পরিচালনা থেকেই পরিসংখ্যানের উৎপত্তি হয়েছে । রাষ্ট্রের বিভিন্ন তথ্য যেমন - লোকসংখ্যা, রাজ্যবসের পরিমাণ, জন্মমৃত্যু প্রভৃতি হিসাবের জন্য এটি ব্যবহৃত হত। বাংলায় ইংরেজি 'Statistics' শব্দের প্রধানত দুইটি পরিভাষা রয়েছে। ভারতে পরিসংখ্যানের জনক বলে খ্যাত প্রশান্ত চন্দ্র মহলানবিশ ইংরেজি 'Statistics' এর বাংলা করেন ‘রাশিবিজ্ঞান’। অন্যদিকে বাংলাদেশে পরিসংখ্যানের জনক কাজী মোতাহার হোসেন ইংরেজি 'Statistics' এর পরিভাষা হিসেবে বাংলায় ‘পরিসংখ্যান’ নামে একটি নতুন শব্দ সৃষ্টি করেন। ২০১০ সালে প্রকাশিত তালিকায় আন্তর্জাতিক পরিসংখ্যান সংস্থা ‘পরিসংখ্যান’ শব্দটিকে স্বীকৃতি দিয়েছে। পরিসংখ্যানের শাখা ১-গড় ২-মধ্যক ৩-প্রচুরক ৪-আয়তলেখ ৫-অজিভরেখা ৬-গনসংখ্যা ৭-বহুভুজ পরিসংখ্যানের বৈশিষ্ট্য পরিসংখ্যানে সংখ্যাসূচক প্রকাশ আবশ্যক। পরিসংখ্যানে হচ্ছে তথ্যের সমষ্টি। পরিসংখ্যানের অনুসন্ধান কোন একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রের সাথে সম্পর্কিত হতে হবে। পরিসংখ্যান তথ্য বহুবিধ কারণ দ্বারা প্রভাবিত হয়। পরিসংখ্যান তথ্য সু-শৃঙ্খলভাবে সংগ্রহ করতে হবে। পরিসংখ্যান তুলনাযোগ্য ও সমজাতীয় হতে হবে। পরিসংখ্যান প্রাক্কলনে যুক্তি-সঙ্গত ও পরিমাণে সঠিকতা বজায় রাখার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। পরিসংখ্যানের গুরুত্ব প্রাচীণ কালে পরিসংখ্যানের ব্যবহার কেবলমাত্র রাষ্ট্রীয় কার্যাদি পরিচালনার মধ্যে সীমিত থাকলেও বর্তমানে এর ব্যবহার মানব জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বিস্তৃত। মানুষের উদ্ভাবনী শক্তি পরিসংখ্যানের বিভিন্ন কলা- কৌশলকে অর্থনৈতিক , রাজনৈতিক ও সামাজিক ক্ষেত্রে বহুল ব্যবহারের দ্বার উন্মোচন করেছে। পরিসংখ্যান আধুনিক মানব সভ্যতার বিভিন্ন ক্ষেত্রে কিরুপ ভূমিকা পালন করছে,তা নিম্নে আলোচনা করা হলোঃ মানব কল্যাণে পরিসংখ্যান প্রাতিষ্ঠানিক নীতি নির্ধারণে পূর্বাভাস প্রদানে জাতীয় পরিকল্পনা গ্রহণ ও মূল্যায়নে রাষ্ট্রীয় প্রশাসন যন্ত্রে সামাজিক গবেষণায় ব্যবসা-বাণিজ্যে অর্থনৈতিক গবেষণায় রাষ্ট্রীয় আইন প্রণয়নে বিজ্ঞানের অন্যান্য শাখায় বিভিন্ন চলকের মধ্যে কার্যকর সম্পর্ক নির্ণয় অতীত জ্ঞান অভিজ্ঞতা সংরক্ষণে। রাষ্ট্রের কার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে। একটি পরিসংখ্যান (একবচন) বা নমুনা পরিসংখ্যান হল একটি নমুনার মান থেকে গণনা করা যেকোন পরিমাণ যা পরিসংখ্যানগত উদ্দেশ্যে বিবেচনা করা হয়। পরিসংখ্যানগত উদ্দেশ্যগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হচ্ছে একটি জনসংখ্যার প্যারামিটার অনুমান করা, একটি নমুনা বর্ণনা করা, বা একটি অনুমান মূল্যায়ন করা। পরিসংখ্যান হচ্ছে নমুনা মানের গড় (বা গড়)। প্রদত্ত নমুনার ফাংশন এবং ফাংশন এর মান উভয়ের জন্যে পরিসংখ্যান শব্দটি ব্যাবহার করা হয়। যখন একটি পরিসংখ্যান একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়, তখন এটি এমন একটি নাম দ্বারা নির্দেশ করা যেতে পারে যা তার উদ্দেশ্য নির্দেশ করে। যখন একটি পরিসংখ্যান একটি জনসংখ্যার প্যারামিটার অনুমান করার জন্য ব্যবহার করা হয়, তখন পরিসংখ্যানটিকে একটি অনুমানকারী পরিসংখ্যান বলা হয়। একটি জনসংখ্যার প্যারামিটার হল অধ্যয়নের অধীনে জনসংখ্যার যে কোনও বৈশিষ্ট্য, কিন্তু যখন এটি সরাসরি জনসংখ্যার প্যারামিটারের মান পরিমাপ করা সম্ভব হয় না , তখন পরিসংখ্যানগত পদ্ধতিগুলি একটি নমুনা থেকে গণনা করা হয় যা একটি পরিসংখ্যানের ভিত্তিতে প্যারামিটারের সম্ভাব্য মান অনুমান করতে ব্যবহৃত হয় যা জনসংখ্যা থেকে নেওয়া। উদাহরণ স্বরূপ বলা যায় , নমুনা গড় হল জনসংখ্যা গড়ের একটি নিরপেক্ষ অনুমানকারী । এ থেকে বুঝা যায় নমুনার প্রত্যাশিত মান প্রকৃত জনসংখ্যা গড়ের সমান। নমুনা ডেটা সংক্ষিপ্ত করতে একটি বর্ণনামূলক পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়। পরিসংখ্যানগত হাইপোথিসিস পরীক্ষাকরার ক্ষেত্রে একটি টেস্ট পরিসংখ্যান ব্যবহার করা হয়। মনে রাখবেন যে একটি একক পরিসংখ্যান একাধিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা যেতে পারে - উদাহরণস্বরূপ বলা যায়, নমুনা গড় জনসংখ্যার গড় অনুমান করতে, একটি নমুনা ডেটা সেট বর্ণনা করতে বা একটি অনুমান পরীক্ষা করতে পরিসংখ্যান ব্যবহার করা যেতে পারে। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ পরিসংখ্যান পরিচিতি পরিসংখ্যান পাঠশালা পরিসংখ্যান মূল বিষয়ের নিবন্ধ উপাত্ত রৌপ বিজ্ঞান তথ্য গাণিতিক ও পরিমাণগত পদ্ধতি (অর্থশাস্ত্র) গবেষণা পদ্ধতি আরব উদ্ভাবন
https://en.wikipedia.org/wiki/Statistics
Statistics
Statistics (from German: Statistik, orig. "description of a state, a country") is the discipline that concerns the collection, organization, analysis, interpretation, and presentation of data. In applying statistics to a scientific, industrial, or social problem, it is conventional to begin with a statistical population or a statistical model to be studied. Populations can be diverse groups of people or objects such as "all people living in a country" or "every atom composing a crystal". Statistics deals with every aspect of data, including the planning of data collection in terms of the design of surveys and experiments. When census data cannot be collected, statisticians collect data by developing specific experiment designs and survey samples. Representative sampling assures that inferences and conclusions can reasonably extend from the sample to the population as a whole. An experimental study involves taking measurements of the system under study, manipulating the system, and then taking additional measurements using the same procedure to determine if the manipulation has modified the values of the measurements. In contrast, an observational study does not involve experimental manipulation. Two main statistical methods are used in data analysis: descriptive statistics, which summarize data from a sample using indexes such as the mean or standard deviation, and inferential statistics, which draw conclusions from data that are subject to random variation (e.g., observational errors, sampling variation). Descriptive statistics are most often concerned with two sets of properties of a distribution (sample or population): central tendency (or location) seeks to characterize the distribution's central or typical value, while dispersion (or variability) characterizes the extent to which members of the distribution depart from its center and each other. Inferences made using mathematical statistics employ the framework of probability theory, which deals with the analysis of random phenomena. A standard statistical procedure involves the collection of data leading to a test of the relationship between two statistical data sets, or a data set and synthetic data drawn from an idealized model. A hypothesis is proposed for the statistical relationship between the two data sets, a alternative to an idealized null hypothesis of no relationship between two data sets. Rejecting or disproving the null hypothesis is done using statistical tests that quantify the sense in which the null can be proven false, given the data that are used in the test. Working from a null hypothesis, two basic forms of error are recognized: Type I errors (null hypothesis is rejected when it is in fact true, giving a "false positive") and Type II errors (null hypothesis fails to be rejected when an it is in fact false, giving a "false negative"). Multiple problems have come to be associated with this framework, ranging from obtaining a sufficient sample size to specifying an adequate null hypothesis. Statistical measurement processes are also prone to error in regards to the data that they generate. Many of these errors are classified as random (noise) or systematic (bias), but other types of errors (e.g., blunder, such as when an analyst reports incorrect units) can also occur. The presence of missing data or censoring may result in biased estimates and specific techniques have been developed to address these problems.
1241
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B7%E0%A6%BE
শিক্ষা
শিক্ষা হল জ্ঞানলাভের একটি পদ্ধতিগত প্রক্রিয়া এবং ব্যক্তির সম্ভাবনার পরিপূর্ণ বিকাশ সাধনের অব্যাহত অনুশীলন। শিক্ষা প্রক্রিয়ায় কোনো ব্যক্তির অন্তর্নিহিত গুণাবলীর পূর্ণ বিকাশের জন্য উৎসাহ দেয়া হয় এবং তাকে সমাজের একজন উৎপাদনশীল সদস্য হিসেবে প্রতিষ্ঠালাভের জন্য যে সব দক্ষতা প্রয়োজন সেগুলি অর্জনে সহায়তা করা হয়। সাধারণ অর্থে দক্ষতা বা জ্ঞান অর্জনই হল শিক্ষা। বাংলা শিক্ষা শব্দটি এসেছে ‍'শাস' ধাতু থেকে, যার অর্থ শাসন করা বা উপদেশ দান করা। অন্যদিকে শিক্ষার ইংরেজি প্রতিশব্দ এডুকেশন এসেছে লাতিন শব্দ এডুকেয়ার বা এডুকাতুম থেকে, যার অর্থ বের করে আনা অর্থাৎ ভেতরের সম্ভাবনাকে বাইরে বের করে নিয়ে আসা বা বিকশিত করা। সক্রেটিসের ভাষায় “শিক্ষা হল মিথ্যার অপনোদন ও সত্যের বিকাশ।” এরিস্টটল বলেন “সুস্থ দেহে সুস্থ মন তৈরি করাই হলো শিক্ষা”। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ভাষায় “শিক্ষা হল তাই, যা আমাদের কেবল তথ্য পরিবেশনই করে না; বিশ্বসত্তার সাথে সামঞ্জস্য রেখে আমাদের জীবনকেও গড়ে তোলে।” শব্দের উৎপত্তি শিক্ষা শব্দের উৎপত্তি সংস্কৃত "শাস" শব্দ ধাতু থেকে। সাধারণভাবে বলা যায় মানুষের আচরণের কাঙ্ক্ষিত, বাঞ্চিত এবং ইতিবাচক পরির্বতনই হলো শিক্ষা। যুগে যুগে নানা মনীষী নানাভাবে শিক্ষা সংজ্ঞায়িত করেছেন । আবার সময়ের সাথে সাথে শিক্ষার সংজ্ঞা বা ধারণা ও পদ্ধতিতে পরির্বতন এসেছে। ইংরেজিতে ব্যাকরণগতভাবে, "এডুকেশন" শব্দটি লাতিন ēducātiō (যার অর্থ প্রজনন এবং লালন পালন করা), ēducō (যার অর্থ আমি শিক্ষাদান করি, আমি প্রশিক্ষণ দেই) যা হোমোনিম ēdūcō এর সাথে সম্পর্কিত (যার অর্থ আমি এগিয়ে নিয়ে যাই, আমি উত্থাপন করি) এবং Dōcō ( যার অর্থ আমি নেতৃত্ব দেই, আমি পরিচালনা করি ) থেকে উৎপত্তি হয়েছে। ইতিহাস প্রাগৈতিহাসিক কালে শিক্ষা শুরু হয়েছিল বয়স্ক ব্যক্তিদের দ্বারা যুবকদের সমাজের জন্য প্রয়োজনীয় জ্ঞান ও দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেয়ার মাধ্যমে। প্রাক-শিক্ষিত সমাজ মূলত মৌখিকভাবে এবং অনুকরণের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। গল্প-বলার মাধ্যমে জ্ঞান, মূল্যবোধ এবং দক্ষতা এক প্রজন্ম থেকে পরের প্রজন্মের কাছে স্থানান্তরিত হয়েছে। সাংস্কৃতিক দক্ষতা প্রসারিত হতে পারে অনুকরণের মাধ্যমে জ্ঞান অর্জন ও আনুষ্ঠানিক শিক্ষা উন্নত করার মধ্যমে। মিশরে মিডল কিংডম এর সময় স্কুল বিদ্যমান ছিল। প্লেটো এথেন্সে একাডেমী প্রতিষ্ঠা করেছিলেন যা ছিল ইউরোপের উচ্চতর শিক্ষার প্রথম প্রতিষ্ঠান। ৩৩০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে মিশরে আলেকজান্দ্রিয়া শহরটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, এথেন্সের বুদ্ধিবৃত্তিক প্যাড হিসাবে এটি প্রাচীন গ্রিসে বিখ্যাত হয়ে ওঠেছিল। সেখানে, আলেকজান্দ্রিয়ার বৃহত্তর গ্রন্থাগারটি খ্রিষ্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে নির্মিত হয়েছিল। ৪৭৬ খ্রিষ্টাব্দে রোমের পতনের পর ইউরোপীয় সভ্যতায় সাক্ষরতা এবং সংগঠনের পতন ঘটেছিল। চীনে কনফুসিয়াস (৫৫১-৪৭৯ খ্রিস্টপূর্বাব্দ), লূ এর রাজ্যের সবচেয়ে প্রভাবশালী প্রাচীন দার্শনিক ছিলেন, যার শিক্ষাগত দৃষ্টিভঙ্গি চীনের সমাজ এবং কোরিয়া, জাপান ও ভিয়েতনামের মত প্রতিবেশী রাষ্ট্রের উপর প্রভাব বিস্তার করেছিল। কনফুসিয়াস শিষ্যদের একত্রিত করেন এবং একটি শাসককে নিরর্থকভাবে অনুসন্ধান করেন, যিনি সুশাসনের জন্য তার আদর্শগুলি গ্রহণ করবে। তার Analects অনুসরণকারীদের দ্বারা লিখিত হয়েছিল যা পূর্ব এশিয়ায় আধুনিক যুগেও শিক্ষার উপর ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। রোমের পতনের পর, ক্যাথলিক চার্চ পশ্চিম ইউরোপে সাক্ষরতার ও স্কলারশিপের একমাত্র রক্ষাকর্তা হয়ে উঠেছিল। চার্চ ক্যাথিড্রাল স্কুলকে আধুনিক যুগের শিক্ষা ব্যবস্থার কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। এই প্রতিষ্ঠানগুলি শেষ পর্যন্ত মধ্যযুগীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং ইউরোপের বিভিন্ন আধুনিক বিশ্ববিদ্যালয়গুলির অগ্রদূত হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেছিল। উচ্চ মধ্যযুগে সময় চার্টার্স ক্যাথিড্রাল দ্বারা বিখ্যাত এবং প্রভাবশালী Chartres ক্যাথিড্রাল স্কুল পরিচালিত হয়েছিল। পশ্চিম ইউরোপের মধ্যযুগীয় বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পশ্চিম ইউরোপ জুড়ে সুসংহত ছিল, যা তদন্তের স্বাধীনতাকে উত্সাহিত করে, এবং একদল পণ্ডিত ও প্রাকৃতিক দার্শনিকদের সৃষ্টি করেছিল , যেমন, নেপলস বিশ্ববিদ্যালয়ের টমাস অ্যাকুইনাস , অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটির রবার্ট গ্রোসেটেস্ট এবং বৈজ্ঞানিক পরীক্ষার পদ্ধতিগত পদ্ধতির প্রারম্ভিক প্রকাশক, এবং জৈবিক গবেষণার অগ্রদূত সেন্ট অ্যালবার্ট গ্রেট ছিলেন অন্যতম। ১০৮৮ সালে প্রতিষ্ঠিত বলোনি বিশ্ববিদ্যালয়কে প্রথম এবং প্রাচীনতম অপারেটিং ইউনিভার্সিটি বলে মনে করা হয়। মধ্যযুগীয় সময়ে মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামিক বিজ্ঞান ও গণিত সমৃদ্ধ হয়েছিল ইসলামিক খলিফার অধীনে, যা পশ্চিম আইবেরিয়ান উপদ্বীপ থেকে পূর্ব সিন্ধু পর্যন্ত এবং দক্ষিণে আলমোরাভিড রাজবংশ ও মালির সাম্রাজ্য পর্যন্ত বিস্তৃতি লাভ করেছিল। ইউরোপে রেনেসাঁ প্রাচীন গ্রিক এবং রোমান সভ্যতার বৈজ্ঞানিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক তদন্ত এবং উপলব্ধির নতুন যুগের সূচনা করেছিল। প্রায় ১৪৫০ সালের দিকে জোহানেস গুটেনবার্গ একটি প্রিন্টিং প্রেস তৈরি করেন, যা সাহিত্যের কাজকে আরও দ্রুত ছড়িয়ে দেওয়ার অনুপ্রেরণা দিয়েছিল। ইউরোপীয় সাম্রাজ্যের যুগে ইউরোপীয় দর্শন, ধর্ম, শিল্প ও বিজ্ঞান বিষয়ক ধারণাগুলি বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। মিশনারি ও পণ্ডিতরা অন্যান্য সভ্যতা থেকে নতুন ধারণা নিয়ে আসছিল - জেসুইট চীন মিশনের সাথে যারা চীন ও ইউরোপের মধ্যে জ্ঞান, বিজ্ঞান এবং সংস্কৃতি প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। ইউরোপ থেকে কাজগুলি অনুবাদ করে যেমন চীনের পণ্ডিতদের জন্য ইউক্লিডের এলিমেন্টস অনুবাদ এবং ইউরোপীয় শ্রোতাদের জন্য কনফুসিয়াসের চিন্তা চেতনা কথা বলা যায়। আলোকায়নের যুগের মাধ্যমে ইউরোপ আরও নিরপেক্ষ শিক্ষাগত দৃষ্টিভঙ্গির প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে ছিল। বেশিরভাগ দেশে আজ নির্দিষ্ট বয়স পর্যন্ত সব শিশুদের জন্য পূর্ণ-সময়ের শিক্ষা স্কুলে বা অন্যত্র বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এই কারণে বাধ্যতামূলক শিক্ষার বিস্তার ও জনসংখ্যা বৃদ্ধির সাথে মিলিতভাবে, ইউনেস্কো গণনা করে লক্ষ্য করেছে যে আগামী ৩০ বছরের মধ্যে আরও মানুষ আনুষ্ঠানিক শিক্ষা লাভ করবে যা মানব ইতিহাসে বিরল ঘটনা হবে এটি। শিক্ষার ধরন শিক্ষা একটি জীবনব্যাপী প্রক্রিয়া। মানুষ জন্মের পর থেকে মৃত্যুর আগে মূহুর্ত পর্যন্ত শেখে। তাই শিক্ষার লাভের ধরন বিভিন্ন।যেমন: আনুষ্ঠানিক শিক্ষা আনুষ্ঠানিক শিক্ষা এমন একটি কাঠামোগত পরিবেশে ঘটে থাকে যার সুনির্দিষ্ট উদ্দেশ্য হচ্ছে শিক্ষার্থীদের শিক্ষাদান। সাধারণত, একটি স্কুলের পরিবেশে আনুষ্ঠানিক শিক্ষা সঞ্চালিত হয় যেখানে শ্রেণীকক্ষে একাধিক শিক্ষার্থীদের জন্য একজন প্রশিক্ষিত এবং প্রত্যয়িত শিক্ষকের প্রয়োজন পড়ে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষাদানের জন্য । বেশিরভাগ স্কুলে একটি মানসম্মত আদর্শ ডিজাইন করা হয় যার মাধ্যমে সিস্টেমে সমস্ত শিক্ষাগত পছন্দগুলি নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এই ধরনের পছন্দগুলি পাঠ্যক্রম, সাংগঠনিক মডেল, শারীরিক শিক্ষার স্থানগুলির (যেমন শ্রেণীকক্ষ) নকশা, ছাত্র-শিক্ষক ইন্টারঅ্যাকশন, মূল্যায়ন পদ্ধতি, শ্রেণীর আকার, শিক্ষাগত কর্মকাণ্ড, এবং আরও অনেক কিছু অন্তর্ভুক্ত করে।শিক্ষকদের কাছ বেল বাজাতে পারেন। প্রাকস্কুল প্রাকস্কুলগুলি প্রায় তিন থেকে সাত বছর বয়স পর্যন্ত ছেলেমেয়েদের শিক্ষা প্রদান করে যা দেশের উপর নির্ভর করে যখন শিক্ষার্থীরা প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রে প্রবেশ করে। এইগুলি নার্সারি স্কুল এবং কিন্ডারগার্টেন হিসাবেও পরিচিত। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে, যেখানে কিন্ডারগার্টেন শব্দটি প্রাথমিক শিক্ষার জন্য ব্যবহৃত শব্দ। কিন্ডারগার্টেন তিন থেকে সাত বছরের জন্য একটি শিশু-কেন্দ্রিক প্রাক পাঠ্যক্রম প্রদান করে। এখানে মূলত শিশুদের শারীরিক, বুদ্ধিবৃত্তিক এবং নৈতিক প্রকৃতির উদ্ঘাটন করার জন্য চেষ্টা করা হয়। প্রাথমিক প্রাথমিক শিক্ষা আনুষ্ঠানিক ও কাঠামোগত যা প্রথম পাঁচ থেকে সাত বছর নিয়ে গঠিত। সাধারণত, প্রাথমিক শিক্ষা পাঁচ থেকে ছয় বছর এবং ছয় থেকে আট বছর বয়স পর্যন্ত পড়াশোনা করানো হয়ে থাকে, যদিও এর মধ্যে, মাঝে মাঝে দেশ ভেদে ভিন্নতা রয়েছে। বিশ্বব্যাপী, ছয় থেকে বারো বছর বয়সী প্রায় ৮৯% শিশু প্রাথমিক শিক্ষায় ভর্তি হয় এবং এই অনুপাত বেড়েই চলেছে। ইউনেস্কো দ্বারা চালিত ২০১৫ সালের মধ্যে "সবার জন্য প্রাথমিক শিক্ষা" বেশিরভাগ দেশ এই প্রোগ্রাম বাস্তবায়নের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছে এবং অনেক দেশে এটি বাধ্যতামূলক করা হয়েছে । প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মধ্যে বিভাজন কিছুটা আলাদা, তবে এটি সাধারণত প্রায় এগারো বা বারো বছর বয়সের মধ্যে ঘটে। কিছু শিক্ষা ব্যবস্থায় পৃথক মাধ্যমিক বিদ্যালয় রয়েছে, যেখানে চৌদ্দ বছর বয়স পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষার চূড়ান্ত পর্যায়ে স্থানান্তর করা হয় । প্রাথমিক শিক্ষা প্রদানের স্কুলগুলি প্রাথমিকভাবে প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসাবে পরিচিত। প্রাথমিক বিদ্যালয়কে আবার শিশু এবং জুনিয়র স্কুলের মধ্যে বিভক্ত করা হয়। ভারতে, উদাহরণস্বরূপ, বারো বছর ধরে বাধ্যতামূলক শিক্ষা, আট বছরে প্রাথমিক(elimentary) শিক্ষা, প্রাথমিক শিক্ষার জন্য পাঁচ বছর এবং উচ্চ প্রাথমিক শিক্ষার জন্য তিন বছর করা হয়েছে। ন্যাশনাল কাউন্সিল অফ এডুকেশনাল রিসার্চ অ্যান্ড ট্রেনিং দ্বারা পরিকল্পিত একটি জাতীয় পাঠ্যক্রমের কাঠামোর উপর ভিত্তি করে ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ১২ বছরের বাধ্যতামূলক স্কুল শিক্ষা প্রদান করা হয়। মাধ্যমিক বিশ্বের বেশিরভাগ সমসাময়িক শিক্ষা ব্যবস্থায়, মাধ্যমিক শিক্ষায় বয়ঃসন্ধির সময় আনুষ্ঠানিক শিক্ষার প্রসার ঘটে। এটি প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাধারণত "মাধ্যমিক উত্তর" বা "উচ্চতর" শিক্ষা (যেমন, বিশ্ববিদ্যালয়, বৃত্তিমূলক স্কুল) থেকে অপ্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সাধারণত প্রাথমিক শিক্ষা বাধ্যতামূলক। এই সিস্টেমের উপর ভিত্তি করে এই সময়ের জন্য বিদ্যালয়গুলি, বা এর একটি অংশকে সেকেন্ডারি বা উচ্চ বিদ্যালয়, জিমন্যাশিয়াম, লিসিম, মধ্যম স্কুল, কলেজ বা বৃত্তিমূলক স্কুল বলা যেতে পারে। এই পদগুলির কোনও সঠিক অর্থ এক সিস্টেম থেকে অন্যটিতে পরিবর্তিত হতে পারে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার মধ্যে সঠিক সীমাও দেশ ভেদে আলাদা হতে পারে। তবে সাধারণত সপ্তম থেকে দশম শ্রেণী পর্যন্ত স্কুলে যাওয়া হয়। মাধ্যমিক শিক্ষার প্রধানত কিশোর বয়সের মধ্যেই ঘটে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা এবং অস্ট্রেলিয়ায় প্রাথমিক ও মাধ্যমিক শিক্ষার সাথে কখনও কখনও K-12 নির্দেশ করা হয় , এবং নিউজিল্যান্ডে বছরে ১-১৩ বছর পর্যন্ত ধরা হয়। মাধ্যমিক শিক্ষার উদ্দেশ্য হতে পারে সাধারণ জ্ঞান দান, উচ্চশিক্ষার জন্য প্রস্তুত করা, অথবা সরাসরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা যেতে পারে পেশার জন্য। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ১৯১০ সাল পর্যন্ত মাধ্যমিক শিক্ষার প্রচলন ছিল না। বড় কর্পোরেশনের উত্থান এবং কারখানায় প্রযুক্তির অগ্রগতির সাথে দক্ষ শ্রমিকদের প্রয়োজন ছিল। এই নতুন চাকরির চাহিদা পূরণের জন্য উচ্চ বিদ্যালয়গুলি তৈরি করা হয়েছিল, কারিকুলামটি বাস্তব পেশাগত কাজের দক্ষতার উপর নিবদ্ধ ছিল যা ছাত্রদেরকে সাদা কলার বা দক্ষ নীল কলারের কাজের জন্য ভালভাবে প্রস্তুত করবে। এটি নিয়োগকর্তাদের এবং কর্মীদের উভয়ের জন্য উপকারী বলে প্রমাণিত হয়েছে, যেহেতু উন্নত মানবাধিকারের ফলে নিয়োগকর্তার খরচ কম হচ্ছিল, অন্যদিকে দক্ষ শ্রমিকরা উচ্চতর বেতন ও পাচ্ছিল। ইউরোপে মাধ্যমিক শিক্ষার একটি দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে। যেখানে ষোড়শ শতকের গোঁড়ার দিকে ব্যাকরণ স্কুল বা একাডেমী, পাবলিক স্কুলগুলির আকারে, বিনা বেতনে পড়ার জন্য স্কুল বা দাতব্য শিক্ষাগত ফাউন্ডেশনগুলির কথা উল্লেখ করা যেতে পারে যা ব্যাপকভাবে প্রচলিত ছিল। কমিউনিটি কলেজ পরিবর্তনশীল পর্যায়ে অন্য একটি বিকল্প প্রস্তাব করে। তারা একটি নির্দিষ্ট এলাকার বাসিন্দাদের nonresidential জুনিয়র কলেজ কোর্স প্রদান করে। উচ্চতর উচ্চশিক্ষা হল তৃতীয় পর্যায়, বা পোষ্টসেকন্ডারি শিক্ষা, এটি একটি অ-বাধ্যতামূলক শিক্ষাগত স্তর যা উচ্চ বিদ্যালয় বা মাধ্যমিক বিদ্যালয় যেমন স্কুল সমাপ্তি অনুসরণ করে। তৃতীয়তঃ স্নাতক এবং স্নাতকোত্তর শিক্ষা সহ বৃত্তিমূলক শিক্ষা এবং প্রশিক্ষণ কে এর অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কলেজ এবং বিশ্ববিদ্যালয় প্রধানত উচ্চ শিক্ষা প্রদান করে। সমষ্টিগতভাবে এইগুলি উচ্চ বিভাগ হিসাবে পরিচিত। উচ্চ শিক্ষা সম্পন্ন করা ব্যক্তি সাধারণত সার্টিফিকেট, ডিপ্লোমা, বা একাডেমিক ডিগ্রী প্রাপ্ত হয়ে থাকে। উচ্চ শিক্ষা সাধারণত একটি ডিগ্রী-স্তর বা ডিগ্রী যোগ্যতা জড়িত থাকে। অধিকাংশ উন্নত দেশগুলিতে জনসংখ্যা (৫০% পর্যন্ত) এখন তাদের জীবনের কোন একটা সময় উচ্চশিক্ষায় প্রবেশ করে। জাতীয় অর্থনীতির জন্য উচ্চশিক্ষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ, উভয়ই একটি গুরুত্বপূর্ণ শিল্প হিসেবে বিবেচিত হয়, এবং বাকি প্রশিক্ষিত এবং শিক্ষিত কর্মীরা অর্থনীতির উৎস হিসাবে গণ্য। বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা শিক্ষাদান, গবেষণা এবং সামাজিক সেবা কার্যক্রমকে অন্তর্ভুক্ত করে, এবং এটি স্নাতক পর্যায়ে উভয়ই অন্তর্ভুক্ত (কখনও কখনও উচ্চতর বিভাগ হিসাবে উল্লেখ করা হয়) এবং স্নাতক (বা স্নাতকোত্তর) স্তর (কখনও কখনও স্নাতক স্কুল হিসাবে পরিচিত)। বিশ্ববিদ্যালয় সাধারণত বেশ কিছু কলেজ নিয়ে গঠিত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে ইউনিভার্সিটিগুলি ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ব্যক্তিগত এবং স্বাধীন হতে পারে; সরকারি এবং স্টেট নিয়ন্ত্রিত পেনসিলভানিয়া উচ্চ মাধ্যমিকের সিস্টেমের মতো রাজ্য শাসিত; বা স্বাধীন, কিন্তু ভার্জিনিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের মত স্টেট থেকে তহবিল প্রাপ্ত হতে পারে । এখন ইন্টারনেটের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের কাছে সহজলভ্য বেশ কিছু ক্যারিয়ার নির্দিষ্ট কোর্স পাওয়া যায়। উদার শিল্প শিক্ষা(liberal arts education) নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার একটি কোর্স আছে যাকে কলেজ বা বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঠ্যক্রম হিসেবে সংজ্ঞায়িত করা যেতে পারে যার মূল কাজ হল সাধারণ জ্ঞান প্রদান এবং একটি পেশাদার, বৃত্তিমূলক বা কারিগরি পাঠ্যক্রমের বিপরীতে সাধারণ বুদ্ধিবৃত্তিক ক্ষমতা বিকাশের লক্ষ্যে শিক্ষাদান করা। ইউরোপে উদার শিল্প শিক্ষার (liberal arts education) সূচনা হয়েছে, যা যুক্তরাষ্ট্রে liberal arts college শব্দটির সাথে যুক্ত। বৃত্তিমূলক বৃত্তিমূলক শিক্ষা হচ্ছে সরাসরি এবং বাস্তব প্রশিক্ষণের উপর নিবদ্ধ শিক্ষার একটি ফর্ম। পেশাগত শিক্ষা একটি শিক্ষানবিশ বা ইন্টার্নশিপের পাশাপাশি চলতে পারে এমন একটি কাঠামো যেমন, কৃষি, প্রকৌশল, ঔষধ, স্থাপত্য এবং কলা এর অন্তর্ভুক্ত। বিশেষ অতীতে অক্ষম ছিল তারা প্রায়ই সরকারি শিক্ষার জন্য যোগ্য ছিল না। প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্য শিক্ষা বার বার চিকিৎসক বা বিশেষ টিউটর দ্বারা অস্বীকৃত হত। এই প্রারম্ভিক চিকিৎসক (ইটারড, সেগোইন, হাউ, গালাদেডের মত মানুষ) আজকে বিশেষ শিক্ষার ভিত্তি স্থাপন করেছে। তারা স্বতন্ত্র এবং কার্যকরী দক্ষতার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেন। তার প্রাথমিক বছরগুলিতে, বিশেষ শিক্ষা শুধুমাত্র গুরুতর অক্ষমতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের জন্য প্রদান করা হয়েছিল, কিন্তু সম্প্রতি এটি সবার জন্য খোলা হয়েছে। অন্যান্য শিক্ষা ব্যবস্থা যদিও আজকাল তা "বিকল্প" হিসাবে বিবেচিত, অধিকাংশ বিকল্প শিক্ষা ব্যবস্থা প্রাচীন কাল থেকেই বিদ্যমান ছিল। উনবিংশ শতকের প্রথম দিকে পাবলিক স্কুল ব্যবস্থার ব্যাপকভাবে উন্নত হওয়ার পর, কিছু বাবা-মা নতুন ব্যবস্থা নিয়ে অসন্তুষ্ট হয়। অনুন্নত সীমাবদ্ধতার প্রতিক্রিয়া এবং ঐতিহ্যগত শিক্ষার ব্যর্থতার অংশ হিসেবে বিকল্প শিক্ষাটি উন্নত হয় । বিস্তৃত পরিসরে শিক্ষার প্রসার ঘটেছে বিকল্প বিদ্যালয় সহ , স্ব-শিক্ষণ, গৃহে শিক্ষাদান এবং বিদ্যালয়ের বাহিরে শিক্ষাদান। বিকল্প স্কুলের মধ্যে মন্টেসরি স্কুল, ওয়াল্ডর্ফ স্কুল (বা স্টেনার স্কুল), ফ্রেন্ডস স্কুল, স্যান্ডস স্কুল, সামারলিল স্কুল, ওয়ালডেনের পথ, পিপল গ্রোভ স্কুল, সডবেরি ভ্যালি স্কুল, কৃষ্ণমূর্তি স্কুল এবং ওপেন ক্লাসরুম স্কুল রয়েছে। চার্টার স্কুল বিকল্প শিক্ষার অন্য একটি উদাহরণ, যা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সাম্প্রতিক বছরগুলিতে যুক্ত হয়েছে এবং পাবলিক শিক্ষা ব্যবস্থায় তা অধিক গুরুত্ব পেয়েছে। সময়ের সাথে সাথে, এই পরীক্ষা এবং দৃষ্টান্তের চ্যালেঞ্জ থেকে কিছু ধারণা শিক্ষা ক্ষেত্রে আদর্শ হিসাবে গ্রহণ করা যেতে পারে, ঠিক যেমন উনবিংশ শতকের জার্মানিতে ফ্রেডরিখ ফ্রোবেলের শৈশব শিক্ষার দৃষ্টিভঙ্গি সমসাময়িক কিন্ডারগার্টেন শ্রেণীকক্ষে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে । অন্যান্য প্রভাবশালী লেখক ও চিন্তাবিদরা সুইস মানবতাবাদী জোহান হেনরিচ পেস্টলজ্জীকে অন্তর্ভুক্ত করেছেন; আমেরিকান ট্রানস্যানডেন্টালিস্ট আমোস ব্রোনসন অ্যালকোট, রালফ ওয়াল্ডো এমারসন এবং হেনরি ডেভিড থোরো; প্রগতিশীল শিক্ষা প্রতিষ্ঠাতা, জন ডুয়ি এবং ফ্রান্সিস পার্কার; এবং মারিয়া মন্টেসরি এবং রুডলফ স্টিনারের মত শিক্ষাবিদদের অগ্রদূত, এবং সম্প্রতি জন কেলডওয়েল হোল্ট, পল গুডম্যান, ফ্রেডেরিক মেয়ার, জর্জ ডেনিসন এবং ইভান ইলিচ। আদিবাসী আদিবাসী শিক্ষা ব্যবস্থার মধ্যে আদিবাসী জ্ঞান, মডেল, পদ্ধতি, আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যবস্থা প্রচলিত আছে । উপনিবেশ উত্তর প্রেক্ষাপটে, উপনিবেশবাদ প্রক্রিয়ায় আদিবাসী শিক্ষা পদ্ধতির বর্ধিত স্বীকৃতি এবং ব্যবহারের মাধ্যমে আদিবাসী জ্ঞান জ্ঞান চর্চা বেড়ে যেতে পারে। অধিকন্তু, এটি আদিবাসী সম্প্রদায়গুলিকে তাদের ভাষা ও সংস্কৃতির পুনর্নির্মাণ এবং পুনর্বিন্যস্ত করতে পারে এবং আদিবাসী ছাত্রদের শিক্ষাগত সাফল্যের উন্নতি সাধন করতে পারে। অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা ইকোনোমিক কো-অপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) সংস্থা দ্বারা নির্ধারিত শিক্ষার তিনটি পদ্ধতির মধ্যে অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা অন্যতম । অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা বিভিন্ন জায়গায় যেমন বাড়িতে, কাজের মধ্যে , এবং দৈনিক ইন্টারঅ্যাকশন যা সমাজের সদস্যদের মধ্যে শেয়ারে মাধ্যমে পরিচালিত হয় । অনেক শিক্ষার্থীর জন্য ভাষা অধিগ্রহণ, সাংস্কৃতিক নিয়ম এবং আচরণকে অন্তর্ভুক্ত করা যায় । অল্পবয়সী ছেলেমেয়েদের জন্য অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা একটি চলমান প্রক্রিয়া যা বিভিন্ন জায়গায় , যেমন স্কুলের সময়ের বাহিরে , কমিউনিটি সেন্টারে এবং মিডিয়া ল্যাবগুলিতে পরিচালিত হয়ে থাকে। অনানুষ্ঠানিক শিক্ষা সাধারণত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের বাহিরে ঘটে থাকে যা নির্দিষ্ট পাঠ্যক্রমের অনুসরণ করে না । বিশেষ করে বাস্তবের পরিবর্তনের সাথে ব্যবহারিক প্রয়োজনীয়তার উপর ভিত্তি করে এর উৎপত্তি ঘটতে পারে । এটা অপরিহার্যভাবে তথাকথিত শিক্ষা ব্যবস্থাকে অনুসরণ করেনা। শিক্ষণীয়ভাবে সচেতন, নিয়মানুবর্তিতা এবং বিষয় অনুযায়ী, কিন্তু অজ্ঞানভাবে আনুষ্ঠানিক, holistically সমস্যা সম্পর্কিত, এবং পরিস্থিতি ব্যবস্থাপনা এবং জীবনের জন্য ফিটনেস সম্পর্কিত পরিকল্পনা করা হয় না। এটা মানুষ তার দৈনন্দিন জীবনের সরাসরি অভিজ্ঞতা থেকে অর্জন করে। উনবিংশ শতকে শৈশবের বিকাশে 'বিনোদন দ্বারা শিক্ষা' ধারণার প্রয়োগ করা হয়েছিল। বিংশ শতাব্দীর প্রথম দিকে তরুণ প্রজন্মকে অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ধারণাটি আরও বিস্তৃত করা হয়েছিল কিন্তু বেশি জোর দেওয়া হয়েছিল শারীরিক কার্যকলাপের উপর । এল.পি জ্যাকস, জীবনযাত্রার শিক্ষার প্রথম প্রবর্তক, বিনোদন দ্বারা শিক্ষার বর্ণনা দিয়েছেন: "জীবন যাপনের শিল্পে একজন মাস্টার তার কাজের এবং খেলার মধ্যে, তার শ্রম এবং অবসরের মধ্যে , তার মন এবং শরীরের মধ্যে , তার শিক্ষা এবং বিনোদনের মধ্যে কোন পার্থক্য খোঁজেন না । তিনি জানেননা যে তিনি কী কাজ করছেন । এবং অন্য যে কোনও কাজ তিনি করেন বা খেলেন তা ছেড়ে দিয়ে তিনি নিজের শ্রেষ্ঠত্বের দৃষ্টিভঙ্গি অনুধাবন করার জন্য চেষ্টা করেন। নিজের জন্য তিনি সবসময়ই উভয় কাজ করছেন বলে মনে করেন। যা করছেন তা নিজের জন্য ভাল । বিনোদনের মাধ্যমে শিক্ষা একটি সুযোগ যেখানে জীবনের সমস্ত কর্মের মাধ্যমে মানুষ অনেক কিছু শিখতে পারে । চিকিৎসা বিজ্ঞানের ছাত্রদের এনাটমি শিক্ষা দেওয়ার জন্য ওয়েস্টার্ন অন্টারিওর ইউনিভার্সিটি এই ধারণাটি পুনর্বিন্যস্ত করেছে। স্ব-নির্দেশিত শিক্ষা অটোডাইডেকটিক্সিজম একটি চিত্তাকর্ষক গ্রহণ প্রক্রিয়া যেখানে "নিজে নিজে শেখা" বা "নিজের দ্বারা" বা স্ব-শিক্ষক হিসাবে ভূমিকা পালন করতে হয় । কিছু অটোডাইডেক্টস( স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত) প্রচুর সময় ব্যয় করে লাইব্রেরী ও শিক্ষাগত ওয়েবসাইটগুলির সম্পদগুলি পর্যালোচনা করার মাধ্যমে । একজন লোক তার জীবনের প্রায় যেকোনো সময় অটোডাইডেক্ট হতে পারে। যদিও কেউ কেউ একটি নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে এবং একটি প্রচলিত পদ্ধতিতে তারা নিজেদেরকে আনরিলেটেড বিষয় অবহিত করতে পারে । উল্লেখযোগ্য অটোডাইডেক্টসের( স্ব-শিক্ষায় শিক্ষিত) মধ্যে আব্রাহাম লিঙ্কন (ইউএস প্রেসিডেন্ট), শ্রীনিবাস রামানুজন (গণিতবিদ), মাইকেল ফ্যারাডে (রসায়নবিদ ও পদার্থবিজ্ঞানী), চার্লস ডারউইন (প্রফেসর), টমাস আলভা এডিসন (আবিষ্কারক), তাদো আন্ডো (স্থপতি), জর্জ বার্নার্ড শ (নাট্যকার), ফ্রাঙ্ক জাপ্পা (সুরকার, রেকর্ডিং প্রকৌশলী, চলচ্চিত্র পরিচালক) এবং লিওনার্দো দ্য ভিঞ্চি(প্রকৌশলী, গণিতবিদ) অন্যতম । উন্মুক্ত শিক্ষা ও ইলেকট্রনিক প্রযুক্তি ২০১২ সালে ইলেকট্রনিক শিক্ষাগত প্রযুক্তি (ই-লার্নিং নামেও পরিচিত) এর আধুনিক ব্যবহারটি প্রথাগত শিক্ষার হার থেকে ১৪ গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে । ওপেন এডুকেশন ক্রমবর্ধমান শিক্ষা ব্যবস্থা হিসেবে পরিণত হয়েছে । ঐতিহ্যগত শিক্ষা পদ্ধতির তুলনায় তার দক্ষতা এবং ফলাফলই তার মূল কারণ । শিক্ষার খরচ সমগ্র ইতিহাস জুড়ে একটি সমস্যা হিসেবে বিবেচিত হয়েছে, এবং এটি এখন বেশিরভাগ দেশের একটি প্রধান রাজনৈতিক বিষয় । অনলাইন কোর্স প্রায়ই মুখোমুখি ক্লাসের চেয়ে বেশি ব্যয়বহুল হতে পারে। ২০০৯সালে মোট ১৮২ টিরও বেশি কলেজের উপর জরিপ করে দেখা যায় যে প্রায় অর্ধেক সংখ্যক লোকই বলেছে যে অনলাইন ভিত্তিক শিক্ষার খরচ ক্যাম্পাস ভিত্তিক শিক্ষার চেয়ে উচ্চতর ছিল । অনেক বড় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠানগুলি বর্তমানে হার্ভার্ড, এমআইটি এবং বার্কলে যেমন ফ্রি বা প্রায় বিনামূল্যে বিনামূল্যে কোর্স অফার করছে EDX গঠন করার জন্য । উন্মুক্ত শিক্ষা প্রদানের অন্যান্য বিশ্ববিদ্যালয় হল স্ট্যানফোর্ড, প্রিন্সটন, ডিউক, জনস হপকিন্স, এডিনবার্গ, ইউ. পেন, ইউ.মিশিগান, ইউ ভার্জিনিয়া, ইউ.ওয়াশিংটন, এবং ক্যালটেক । মুদ্রণযন্ত্র প্রকাশ হবার পর থেকে এই ব্যবস্থার মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় পরিবর্তন হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে । কার্যকারিতার উপর অনুকূল পরিবেশ থাকা সত্ত্বেও অনেক মানুষ সামাজিক ও সাংস্কৃতিক কারণে ঐতিহ্যবাহী ক্যাম্পাসকে শিক্ষার মাধ্যম হিসেবে নির্বাচন করতে চায়। উন্মুক্ত শিক্ষার ডিগ্রী প্রদান প্রচলিত মেধা-পদ্ধতির ডিগ্রী প্রদানের মতো সাধারণ নয় এমনকি এটি ক্যাম্পাস ভিত্তিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো ও নয়। যদিও কিছু উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ইতোমধ্যে ইউনাইটেড কিংডমে উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের মত প্রচলিত ডিগ্রী প্রদান করে আসতেছে। বর্তমানে বেশিরভাগ উন্মুক্ত শিক্ষা উৎসগুলি তাদের নিজস্ব গঠনের সনদপত্র প্রদান করে। উন্মুক্ত শিক্ষার জনপ্রিয়তার কারণে, এই নতুন ধরনের একাডেমিক সার্টিফিকেটগুলি ঐতিহ্যগত ডিগ্রির মতো আরও সম্মান এবং সমান "একাডেমিক মূল্য" অর্জন করছে। অনেক উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদের জন্য মান সংবলিত পরীক্ষা এবং ঐতিহ্যগত ডিগ্রী প্রদান করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। একটি নতুন সংস্কৃতি শুরু হচ্ছে এমন ব্যক্তিদের জন্য যারা ঐতিহ্যবাহী ক্যাম্পাসে আসক্ত সামাজিক সংযোগগুলি খুঁজছেন। উদাহরণস্বরূপ, শিক্ষার্থীরা অধ্যয়নের জন্য গ্রুপ তৈরি করতে পারে, মিলিত হতে পারবে যেমন তারা UnCollege নাম কলেজ তৈরি করতে পারে। উন্নয়নের লক্ষ্য ১৯০৯ সাল থেকে উন্নয়নশীল বিশ্বের শিশুদের স্কুলে অংশগ্রহণের অনুপাত বৃদ্ধি পেয়েছে । এর আগে, ছেলেদের একটি ছোট্ট অংশ স্কুলে পড়ত। একবিংশ শতকের শুরুতে বিশ্বের অধিকাংশ অঞ্চলে অধিকাংশ শিশু স্কুলে যেতে শুরু করে । ইউনিভার্সাল প্রাইমারী এডুকেশন আটটি আন্তর্জাতিক মিলেনিয়াম ডেভেলপমেন্ট গোল এর মধ্যে একটি, যা পূর্ববর্তী দশকে যে অগ্রগতি হয়েছে, তারপরেও কিছু বাধা এখনও অব্যাহত রয়েছে। সম্ভাব্য দাতাদের কাছ থেকে দাতব্য তহবিল সুরক্ষিত করা একটি স্থায়ী সমস্যা । ওভারসিজ ডেভেলপমেন্ট ইনস্টিটিউটের গবেষকরা দেখিয়েছেন যে শিক্ষার জন্য তহবিলের প্রধান বাধাগুলির মধ্যে অন্যতম হচ্ছে সমস্যাযুক্ত দাতাদের অগ্রাধিকার দেয়া, সাহায্য প্রদানের অপরিপক্ষ ব্যবস্থাপনা এবং এই বিষয়ের পক্ষে প্রমাণ সমর্থনের অভাব । এ ছাড়া, ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল আফ্রিকার সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা অর্জনের জন্য একটি প্রধান বাধা হিসেবে শিক্ষা খাতে দুর্নীতির বিষয়টিকে চিহ্নিত করেছে । উপরন্তু, উন্নয়নশীল বিশ্বের উন্নততর শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকারের জন্য বিদেশীরা যা আশা করে চাহিদার তা এখনও অপ্রতুল । আদিবাসী সরকার চলমান শিক্ষার জন্য যে খরচ হয় তার দায়ভার নিতে অনিচ্ছুক । কিছু পিতামাতার কাছ থেকে অর্থনৈতিক চাপও রয়েছে, যারা তাদের সন্তানদের শিক্ষার দীর্ঘমেয়াদি উপকারের পরিবর্তে স্বল্প মেয়াদী অর্থ উপার্জন করাকে বেশি অগ্রাধিকার দেয় । ইউনেস্কোর ইন্টারন্যাশনাল ইন্সটিটিউট ফর এডুকেশনাল প্ল্যানিং দ্বারা পরিচালিত একটি গবেষণায় ইঙ্গিত দেয় যে, শিক্ষাগত পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনায় শক্তিশালী ক্ষমতা শিক্ষা কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে । স্থায়ী ক্ষমতা বিকাশের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক, সাংগঠনিক ও স্বতন্ত্র পর্যায়ে জটিল হস্তক্ষেপের প্রয়োজন যা কিছু মৌলিক নীতির উপর ভিত্তি করে হতে পারে: জাতীয় নেতৃত্ব এবং মালিকানা যেকোনো হস্তক্ষেপের টাচস্টোন হওয়া উচিত; কৌশলগুলিকে প্রাসঙ্গিক এবং নির্দিষ্ট করা আবশ্যক; পরিকল্পনাগুলিতে একটি সমন্বিত পদক্ষেপের প্রয়োজন , যদিও পদক্ষেপের মধ্যে বাস্তবায়ন মুখ্য ভূমিকা পালন করতে পারে; অংশীদারদের ক্ষমতা উন্নয়নে একটি দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ করা উচিত, স্বল্প মেয়াদী লক্ষ্য অর্জনের জন্য নয়; বাইরের হস্তক্ষেপের বিভিন্ন স্তরে জাতীয় ক্ষমতার প্রভাব মূল্যায়ন শর্তাধীন হওয়া উচিত; শিক্ষার্থীদের নির্দিষ্ট শতাংশ শিক্ষার সংস্কারের জন্য সরানো উচিত (সাধারণত দশম শ্রেণির তা পরে স্কুলগুলিতে অনুশীলন করা হয়) । আন্তর্জাতিকীকরণ প্রায় সব দেশে এখন সার্বজনীন প্রাথমিক শিক্ষা রয়েছে। সমতা-পদ্ধতিতে বা এমনকি ধারণাগুলি-যেগুলি আন্তর্জাতিকভাবে আন্তর্জাতিক স্কুলগুলিতে আন্তর্জাতিক ছাত্র বিনিময় বৃদ্ধি করেছে । ইউরোপীয় সক্রেটিস-ইরাসমাস প্রোগ্রাম ইউরোপীয় বিশ্ববিদ্যালয় জুড়ে বিনিময় সহজতর করে তুলেছে । সোরোস ফাউন্ডেশন কেন্দ্রীয় এশিয়া ও পূর্ব ইউরোপের শিক্ষার্থীদের জন্য অনেক সুযোগ সুবিধা প্রদান করে । International Baccalaureate প্রোগ্রামের মতো প্রোগ্রামগুলি শিক্ষার আন্তর্জাতিকীকরণে ব্যাপক অবদান রেখেছে । আমেরিকান বিশ্ববিদ্যালয়গুলির নেতৃত্বে পরিচালিত The global campus online, প্রকৃত ক্লাস চলাকালে ক্লাস সামগ্রী এবং রেকর্ডকৃত বক্তৃতার ফাইলগুলিতে বিনামূল্যে প্রবেশের অনুমতি দেয় । উন্নয়নশীল দেশে শিক্ষা ও প্রযুক্তি দরিদ্র এলাকায় এবং উন্নয়নশীল দেশের বাসিন্দাদের জন্য শিক্ষা ক্ষেত্রে প্রবেশাধিকার উন্নত করার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ক্রমবর্ধমান গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসতেছে । One Laptop per Child এর মতো দাতব্য প্রতিষ্ঠানগুলি অবকাঠামো প্রদানের জন্য নিবেদিত যার মাধ্যমে সুবিধা-বঞ্চিত ছেলেমেয়েরা শিক্ষাগত সামগ্রীগুলি সহজেই হাতের কাছে পেতে পারে । OLPC ফাউন্ডেশন MIT Media Lab এর একটি গ্রুপ যা বেশ কয়েকটি বড় কর্পোরেশনের দ্বারা সমর্থিত যাদের একটি উল্লেখযোগ্য লক্ষ্য হলো $১০০ ডলারের ল্যাপটপ শিক্ষা সফটওয়্যার জন্য প্রদান করা । ২০০৪ সালে ল্যাপটপগুলি সব জায়গায় পাওয়া যেত । তারা দানের দামের উপর ভিত্তি করে বিক্রি হয় । আফ্রিকাতে, দ্য নিউ পার্টনারশিপ ফর আফ্রিকার ডেভেলপমেন্ট (এনইপিএডি) "ই-স্কুল প্রোগ্রাম" চালু করেছে ১০ বছরের মধ্যে ৬০০০০০ প্রাথমিক ও উচ্চ বিদ্যালয়কে কম্পিউটার সরঞ্জাম, শেখার সামগ্রী এবং ইন্টারনেট এক্সেস সহ আনুষঙ্গিক সুযোগ সুবিধা প্রদানের লক্ষ্যে । এনবিইউইউ ডটকম নামে একটি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সংস্থা প্রকল্প যা সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের সহায়তায় শুরু হয়েছিল , এটি মূলত সামাজিক উন্নয়ন বিষয়ক কাজে যারা জড়িত তাদের ইন্টারনেট ব্যবহার করার সহযোগিতা প্রদানের লক্ষ্যে কাজ করে । ভারত প্রযুক্তিগুলিকে বিকশিত করতেছে যা সরাসরি স্থল-ভিত্তিক টেলিফোন এবং ইন্টারনেট অবকাঠামোর মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের মধ্যে শিক্ষামূলক বিষয়গুলো প্রচার করবে । ২০০৪ সালে ভারতীয় স্পেস রিসার্চ অর্গানাইজেশন এডুসেট নামে একটি সাবস্ক্রিপশন উপগ্রহ উৎক্ষেপণ করে, যা শিক্ষাগত উপকরণগুলি অনেক কম খরচে শিক্ষার্থীদের মধ্যে পৌঁছাতে পারবে।ফলে শিক্ষিতের হার বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষাগত তত্ত্ব শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান হচ্ছে কীভাবে মানুষ কীভাবে শিক্ষাগত পদ্ধতিগুলো, শিক্ষামূলক হস্তক্ষেপের কার্যকারিতা, শিক্ষার মনোবিজ্ঞান এবং স্কুলগুলি সামাজিক মনোবিজ্ঞান হিসাবে কীভাবে সংগঠিত হয় তা শিখে । যদিও "শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান" এবং "স্কুল মনোবিজ্ঞান" শব্দগুলি প্রায়ই স্বতঃস্ফূর্তভাবে ব্যবহার করা হয়, তবে গবেষকরা এবং থিয়োরিস্টরা শিক্ষামূলক মনোবৈজ্ঞানিক হিসাবে চিহ্নিত হতে পারে, যদিও স্কুল বা স্কুল-সম্পর্কিত সেটিংসের অনুশীলনকারীদের স্কুল মনোবৈজ্ঞানিক হিসাবে চিহ্নিত করা হয়। শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান সাধারণ জনসংখ্যার মধ্যে শিক্ষাগত অর্জনের প্রক্রিয়ায় এবং উপ-জনসংখ্যার যেমন প্রতিভাধর শিশুদের এবং নির্দিষ্ট অক্ষমতার সাথে যারা সম্পর্কিত তাদেরকে নির্দেশ করে । শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান অন্যান্য শাখায় সঙ্গে তার কেমন সম্পর্ক তার মাধ্যমে বোঝা যাবে । এটা মূলত মনোবিজ্ঞান দ্বারা জানানো হয়, এটি এমন একটি সম্পর্ক বহন করে যা চিকিৎসা বিজ্ঞান এবং জীববিদ্যা মধ্যে যে সম্পর্ক তার অনুরূপ । শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান একটি বিস্তৃত বিশেষত্বকে বুঝায় যা শিক্ষামূলক নকশা, শিক্ষাগত প্রযুক্তি, পাঠ্যক্রম উন্নয়ন, সাংগঠনিক শিক্ষা, বিশেষ শিক্ষা এবং শ্রেণীকক্ষ ব্যবস্থাপনা সহ শিক্ষাগত গবেষণার মাধ্যমে প্রতিফলিত হয় । শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান cognitive science এবং learning sciences থেকে উদ্ভূত । বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে, শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান বিভাগগুলি সাধারণত শিক্ষার অনুষদগুলির মধ্যেই থাকে, যা সম্ভবত প্রচলিত মনোবিজ্ঞান এর প্রতিনিধিত্ব মূলক যে লেকনেছ আছে তা অনুসন্ধান করে উদাহরণস্বরূপ পরিচিতিমূলক মনোবিজ্ঞান সংক্রান্ত পাঠ্যপুস্তক (লুকা, ব্লেজ, এবং রালে, ২০০৬) এর কথা উল্লেখ করা যায় । মন, মস্তিষ্ক এবং শিক্ষা শিক্ষাগত স্নায়ুবিজ্ঞান একটি উদ্ভূত বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্র যা জৈবিক প্রক্রিয়া ও শিক্ষার মধ্যে মিথস্ক্রিয়া খোঁজার জন্য জ্ঞানীয় স্নায়ুবিজ্ঞান, বিকাশমূলক জ্ঞানীয় স্নায়ুবিজ্ঞান, শিক্ষাগত মনোবিজ্ঞান, শিক্ষাগত প্রযুক্তি, শিক্ষা তত্ত্ব এবং অন্যান্য সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোকে একত্রিত করে । শিক্ষাগত স্নায়ুবিজ্ঞান গবেষকরা স্নায়োবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে পড়াশোনা, সংখ্যাসূচক চেতনা, মনোযোগ এবং ডিসলেকসিয়া, ডিসক্যালকুলিয়া এবং এডিএইচডি সহ তাদের সহকারী সমস্যাগুলি অনুসন্ধান করে যা শিক্ষার সাথে সম্পর্কযুক্ত। সারা বিশ্বে বেশ কয়েকটি একাডেমিক প্রতিষ্ঠান শিক্ষাগত স্নায়ুবিজ্ঞান গবেষণা প্রতিষ্ঠার জন্য অর্থ বিনিয়োগ করতে শুরু করেছে । শিক্ষার দর্শন একটি একাডেমিক ক্ষেত্র হিসাবে, শিক্ষা দর্শন হল "শিক্ষা এবং এর সমস্যাগুলির দার্শনিক অধ্যয়ন । এর কেন্দ্রীয় বিষয় হল শিক্ষা, এবং এর পদ্ধতিগুলো হল দর্শনের বিষয় ।" শিক্ষার দর্শন মূলত শিক্ষার প্রক্রিয়ার দর্শন বা শিক্ষার শৃঙ্খলার দর্শন হতে পারে। শৃঙ্খলা, লক্ষ্য, গঠন, পদ্ধতি বা ফলাফলগুলির সাথে সংশ্লিষ্ট হওয়ার অনুভূতিই হল শিক্ষা দর্শনের আলোচ্য বিষয় । শিক্ষার প্রসার বা শিক্ষিত হওয়া, অথবা শিক্ষার ধারণা, লক্ষ্য ও পদ্ধতির সাথে সংশ্লিষ্টতার পরিপ্রেক্ষিতে এটি মেটাডিসিপ্লিনারি হতে পারে। " যেমন, এটি শিক্ষার ক্ষেত্র এবং শিক্ষাদান পদ্ধতির সাথে জড়িত এমনকি শিক্ষা নীতি এবং পাঠ্যক্রমের পাশাপাশি শেখার প্রক্রিয়া সম্পর্কে প্রশ্ন করার জন্য দর্শনশাস্ত্রের ক্ষেত্র, আধ্যাত্মিকতার ক্ষেত্রসমূহ, প্রবন্ধমালা, এবং দার্শনিক পন্থা (অনুমানমূলক, প্রবিধানিক বা বিশ্লেষণাত্মক) থেকে সাহায্য নিতে পারে । উদাহরণস্বরূপ, এটি কীভাবে শিক্ষা ব্যবস্থা বেড়ে ওঠে তা পর্যালোচনা করতে পারে যা উন্নত ও শিক্ষামূলক প্রথাগুলির মাধ্যমে শিক্ষার মানদণ্ড এবং শিক্ষার বৈধতা, এবং শিক্ষার তত্ত্ব ও অনুশীলনের মধ্যে সম্পর্কের মাধ্যমে প্রকাশিত মূল্যবোধ ও নিয়মসমূহকে অধ্যয়ন করতে সাহায্য করে । শিক্ষা অর্থনীতি এটি যুক্তি প্রদান করেছে যে, উচ্চ মাত্রার অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জনের জন্য দেশে উচ্চ শিক্ষার হার অপরিহার্য । সমালোচকদের বিশ্লেষণ ও তাত্ত্বিক জ্ঞান পূর্বাভাস দেয় যে, দরিদ্র দেশগুলিকে ধনী দেশগুলির তুলনায় দ্রুততর হওয়া উচিত কারণ তারা অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগুলি ইতিমধ্যে ধনী দেশগুলির দ্বারা পরীক্ষিত এবং পরিচালিত হয়েছে তা সহজেই গ্রহণ করতে পারে । যাইহোক, প্রযুক্তি স্থানান্তরের জন্য নতুন মেশিন বা উৎপাদন পদ্ধতি পরিচালনা করতে সক্ষম এমন জ্ঞানী পরিচালকদের এবং ইঞ্জিনিয়ারদের প্রয়োজন হয় যার মাধ্যমে অনুকরণ করার ফাঁকটা বন্ধ করা যাবে । অতএব একটি দেশ শিক্ষক থেকে যা শিখতে পারে একে "human capital" বলে মনে করা হয় । সমষ্টিগত অর্থনৈতিক বৃদ্ধির নির্ধারকদের সাম্প্রতিক গবেষণার মাধ্যমে মৌলিক অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির গুরুত্ব এবং জ্ঞানীয়(cognitive) দক্ষতার ভূমিকার উপর জোর দেয়া হয়েছে । ব্যক্তিগত স্তরে, একটি বড় সাহিত্য আছে যা জ্যাকব মিন্সারের কাজের সাথে সম্পর্কিত যা শিক্ষার এবং অন্যান্য মানব মূলধনের সাথে কীভাবে আয়ের সম্পর্ক আছে তা পর্যালোচনা করে । এই কাজটির মাধ্যমে বেশ কয়েকটি গবেষণা অনুপ্রাণিত হয়েছে, কিন্তু বিতর্কিতও বটে । প্রধান বিতর্কগুলি হচ্ছে কীভাবে শিক্ষার প্রভাব ব্যাখ্যা করতে হয় । কিছু শিক্ষার্থী আছে যারা উচ্চ বুদ্ধিমত্তা সম্পন্ন হয়ে থাকে কিন্তু আর্থিক সমস্যার কারণে তাদের পূর্ণ একাডেমিক সম্ভাবনা অর্জন করতে পারে না। অর্থনীতিবিদ শ্যামুয়েল বোলস এবং হরবার্ট গিন্টস ১৯৭৬ সালে যুক্তি দেন যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে গণতান্ত্রিক অংশগ্রহণের সাম্যবাদী লক্ষ্য এবং পুঁজিবাদী উৎপাদন অব্যাহত মুনাফা দ্বারা প্রভাবিত বৈষম্যগুলির মধ্যে একটি মৌলিক দ্বন্দ্ব অব্যাহত আছে । প্রতিযোগিতা শিক্ষা ব্যবস্থায় প্রতিযোগিতা প্রধান উপাদান হিসেবে কাজ করে। বৈশ্বিক কিংবা জাতীয় শিক্ষা পদ্ধতিতে পরবর্তী প্রজন্মের কাছে নিজেকে তুলে ধরতে প্রতিযোগিতামূলক মনোভাবের সৃষ্টি করা হয়। এক্ষেত্রে বৃত্তি প্রদান অন্যতম মানদণ্ডস্বরূপ। ইংল্যান্ড এবং সিঙ্গাপুরের ন্যায় উন্নত দেশগুলোয় বিশেষ শিক্ষা ব্যবস্থায় বিশেষ ছাত্রদেরকে নির্বাচিত করে শিক্ষা ব্যয় থেকে অব্যহতি দেয়া হয়। শিক্ষাক্রমিক ফলাফলে ছাত্রদের মাঝে প্রতিযোগিতার মনোভাব সৃষ্টি করে সেরা ছাত্রকে গ্রেডের মাধ্যমে নির্ধারণ করা হয়। অনেকক্ষেত্রে কিছুসংখ্যক দেশে অতি উচ্চমাত্রায় চাপ প্রয়োগের ফলে ছাত্রদের মাঝে বুদ্ধি-বৃত্তি চর্চায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে। অনেকসময় পরীক্ষায় অকৃতকার্যতার দরুন তা আত্মহত্যার পর্যায়ে এসে পৌঁছে যায়। এক্ষেত্রে জাপানের শিক্ষাপদ্ধতি প্রধান উদাহরণ হিসেবে বিবেচ্য। আলফি কন শিক্ষা ব্যবস্থায় এজাতীয় প্রতিযোগিতার সমালোচনা করেছেন। তার মতে, ‘ছাত্রদের যোগ্যতা নির্ধারণে প্রতিযোগিতা প্রকৃতপক্ষে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং এটি আমাদের সবাইকে পরাজয়ের দিকে নিয়ে যায়’। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ রিচার্ড লেয়ার্ডও প্রতিযোগিতার ক্ষতিকর প্রভাব সম্পর্কে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘প্রতিযোগিতার ফলে ছাত্ররা এক ধরনের চাপ উপলদ্ধি করে। তারা মনে করে যে তাদের জীবনের প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে অন্যান্যদের তুলনায় সেরা হওয়া। তরুণেরা তাদের প্রাত্যহিক বিদ্যালয় জীবনে কি শিখছে তাই মুখ্য বিষয়। এবং এ ধরনের প্রতিযোগিতা সমাজের জন্য কল্যাণ বয়ে নিয়ে আসে না। আরও দেখুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান শিক্ষা প্রযুক্তি সাক্ষরতার হার অনুযায়ী রাষ্ট্রসমূহের তালিকা শিক্ষাতত্ত্ব বিদ্যালয় শিক্ষার্থী তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Educational Resources from UCB Libraries GovPubs UNESCO Institute for Statistics: International comparable statistics on education systems OECD education statistics Planipolis: a portal on education plans and policies IIEP Publications on Education Systems শিক্ষা জ্ঞানে অংশীদারিত্ব শিক্ষার দর্শন মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Education
Education
Education is the transmission of knowledge, skills, and character traits and manifests in various forms. Formal education occurs within a structured institutional framework, such as public schools, following a curriculum. Non-formal education also follows a structured approach but occurs outside the formal schooling system, while informal education entails unstructured learning through daily experiences. Formal and non-formal education are categorized into levels, including early childhood education, primary education, secondary education, and tertiary education. Other classifications focus on teaching methods, such as teacher-centered and student-centered education, and on subjects, such as science education, language education, and physical education. Additionally, the term "education" can denote the mental states and qualities of educated individuals and the academic field studying educational phenomena. The precise definition of education is disputed, and there are disagreements about the aims of education and the extent to which education differs from indoctrination by fostering critical thinking. These disagreements impact how to identify, measure, and enhance various forms of education. Essentially, education socializes children into society by instilling cultural values and norms, equipping them with the skills necessary to become productive members of society. In doing so, it stimulates economic growth and raises awareness of local and global problems. Organized institutions play a significant role in education. For instance, governments establish education policies to determine the timing of school classes, the curriculum, and attendance requirements. International organizations, such as UNESCO, have been influential in promoting primary education for all children. Many factors influence the success of education. Psychological factors include motivation, intelligence, and personality. Social factors, such as socioeconomic status, ethnicity, and gender, are often associated with discrimination. Other factors encompass access to educational technology, teacher quality, and parental involvement. The primary academic field examining education is known as education studies. It delves into the nature of education, its objectives, impacts, and methods for enhancement. Education studies encompasses various subfields, including philosophy, psychology, sociology, and economics of education. Additionally, it explores topics such as comparative education, pedagogy, and the history of education. In prehistory, education primarily occurred informally through oral communication and imitation. With the emergence of ancient civilizations, the invention of writing led to an expansion of knowledge, prompting a transition from informal to formal education. Initially, formal education was largely accessible to elites and religious groups. The advent of the printing press in the 15th century facilitated widespread access to books, thus increasing general literacy. In the 18th and 19th centuries, public education gained significance, paving the way for the global movement to provide primary education to all, free of charge, and compulsory up to a certain age. Presently, over 90% of primary-school-age children worldwide attend primary school.
1242
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B0
পরিবার
পরিবার পিতা মাতা ও তাদের সন্তান-সন্ততিদের কেন্দ্র করে হতে পারে, দ্বিতীয়ত একসঙ্গে বসবাসরত আত্মীয়-স্বজন সমবায়ে একটি প্রসারিত পরিবারও হতে পারে। তৃতীয় ধরনের পরিবার হলো একটি বৃহৎ সংসার, যেখানে অন্যান্য আত্মীয় ও ছেলেমেয়েদের সঙ্গে কিংবা তাদের ছাড়া অনাত্মীয়রাও যুক্ত হয়। পরিবার প্রায়শ সন্তানসহ বা সন্তানবিহীন এক বা একাধিক দম্পতির ছোট সংসার নিয়ে গঠিত। এর আর্থিক ভিত্তি রয়েছে। এই ভিত্তিকে কেন্দ্র করে আত্মীয়, সামাজিক সম্পর্ক ও প্রতিষ্ঠান গড়ে ওঠে এবং ঐক্যবদ্ধ কাজের মাধ্যমে তা রূপায়িত হয়। পরিবারের বিকাশে সন্ধানযোগ্য বংশগত সম্পর্ক সাধারণত জ্ঞাতি সম্পর্কের চেয়ে অগ্রাধিকার পায়। এই শৃঙ্খলার মধ্যে সদস্যরা সমাজের আর্থিক ও সামাজিক উপ-প্রথাগুলি গড়ে তোলে। বিশ্বের পরিবারও রক্তসম্পর্ককে কেন্দ্র করে গড়ে উঠেছে। বিশ্বের যেকোন পরিবারের অধিকাংশই স্বামী-স্ত্রী ও তাদের অবিবাহিত ছেলেমেয়েদের নিয়ে গঠিত। স্বামী ও স্ত্রী, অথবা বিবাহিত জীবনের এই দুই অংশীদারের যে-কেউ একজন সংসারের নিত্যনৈমিত্তিক কাজ-কর্মের চালক। পরিবার প্রধানের দিক থেকে বংশানুক্রমিক সদস্যদের মধ্যে দাদা, দাদি, বাবা, মা, স্ত্রী, ছেলে, মেয়ে, ছেলের বউ, নাতি, নাত-বউ এবং নাতনি অন্তর্ভুক্ত। অনুরূপভাবে, জ্ঞাতি সদস্যদের মধ্যে রয়েছে চাচা ও চাচী, চাচার ছেলে ও মেয়ে, ভাই ও ভাইয়ের স্ত্রী, ভাইয়ের ছেলেমেয়ে এবং এই ধারাবাহিকতায় অন্যান্যরা। বংশীয় ও জ্ঞাতিগত উভয় শ্রেণীতে পরিবার প্রধানের সকল সন্ধানযোগ্য পূর্ব-পুরুষ ও উত্তরপুরুষ বিগত দিনের অব্যাহত সদস্যতা এবং ঘনিষ্ঠতার পারস্পরিক অনুভবের ভিত্তিতে পরিবারের সদস্য হওয়ার স্বীকৃতি লাভ করতে পারে। বিশ্বে বংশের পরিজনরা পিতা থেকে পুত্র ক্রমিকতায় অর্থাৎ পুরষ পরম্পরার নিম্নগামী ধারায় সংজ্ঞায়িত ও পরিচিত। পিতৃতান্ত্রিক সূত্র নববিবাহিত দম্পতিকে স্বামীর ঘরে ও সংসারে বসবাসের প্রথার সঙ্গে যুক্ত করে। এই উপ-প্রথাসমূহ অনেকগুলো খণ্ডরূপে প্রতিফলিত, যেমন বাড়ি (একটি উঠানকে কেন্দ্র করে বহু লোকজন নিয়ে গঠিত), পাড়া (চারদিকে অনেকগুলি বাড়ি নিয়ে গঠিত প্রতিবেশ) এবং সমাজ (ক্ষুদ্র মানবগোষ্ঠী যেখানে সাধারণভাবে সামাজিক, আর্থিক ও ধর্মীয় সুবিধাদি লভ্য)। সম্ভবত সমাজ সদস্যদের খুঁজে নেওয়া যায় কয়েকটি সাধারণ পূর্বপুরুষের বংশ-পরম্পরায়। বাংলাদেশের মানব সম্প্রদায়গুলোর এই বিভাজিত সংগঠনকে এক সূত্রীয় বংশগতির নিয়ম অবলম্বন করতে হয়েছিল। বিশ্বের পরিবারগুলি পিতৃতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানের অনুশীলনকারী। ব্যাপক অর্থে তারা এক একটি মুক্ত দল। বিবাহিত দম্পতির বন্ধন আত্মীয়বর্গের অন্যান্য ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত। স্বামী-স্ত্রী দুজনের যেকোন একজন আত্মীয়দের দায়-দায়িত্ব বহন করে। বিশ্বে পরিবারের লোকজনদের চেনা যায় একই খানা বা চুলার অংশীদার হিসেবে। একজন বিবাহিত পুরুষ ও নারী মিলিয়ে একটি সমাজ একক। তাদের সংহতি, অভিন্ন স্বার্থ ও কর্তব্য তাদের যেকোন একজনের অন্যবিধ সম্পর্কজাত দায় ও স্বার্থ থেকে অধিক পূর্বাধিকার পায়। তাদের বংশধররা পারস্পরিক স্বার্থে যুক্ত এবং বিবাদরত। পরিবারের সদস্যরা একে-অপরের ওপর নির্ভরশীল এবং সম্পদ, শ্রম ও আবেগ-অনুভূতিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমে তারা জীবনের সামাজিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক দিকগুলি পরিচালনা করে। নির্দিষ্ট বংশধারায় সাধারণত একজন নারী বিভিন্ন বংশের কোন একজন পুরুষের সঙ্গে বিবাহসূত্রে আবদ্ধ হয়। বিয়ের পর সে নিজের বাপের বাড়ি ত্যাগ করে শ্বশুরবাড়িতে যুক্ত হয় এবং সন্তান লাভ করে। শিশুটি পিতা-মাতা উভয় দিকের বংশানুগতির অংশী হয়। উভয় দিক থেকে পরিজাত বলে পিতা-মাতার এই সন্তান মামার বাড়িতে গিয়ে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক বজায় রাখে। বিবাহিত কন্যার বংশ-পরিচিতি অভিব্যক্ত হয় পিতৃসম্পত্তিতে তার অধিকারে এবং প্রধানত তার প্রথম সন্তানের জন্ম, ঘরে ধান আসা, ভাই-বোনের বিয়ে ও প্রধান প্রধান নৈমিত্তিক উৎসব-অনুষ্ঠান উপলক্ষে বাপের বাড়িতে আগমনে। প্রকারভেদ পরিবার প্রধানত ৬ প্রকার ৷ যথা :- • স্বামী-স্ত্রীর সংখ্যার ভিত্তিতে পরিবার ৷ এধরনের পরিবার আবার ৫ ভাগে বিভক্ত।যথা-১/একপত্নী পরিবার ২/বহুপত্নী পরিবার ৩/বহুপতি পরিবার,৪)উপপতি পরিবার ও ৫)উপপত্মী পরিবার • কর্তৃত্বের ভিত্তিতে পরিবার ৷ এধরনের পরিবার তিন প্রকার।যথা-১/পিতৃতান্ত্রিক বা পিতৃপ্রধান পরিবার ২/মাতৃতান্ত্রিক বা মাতৃপ্রধান পরিবার,৩)গোত্রতান্ত্রিক বা গোত্রপ্রধান পরিবার • আকারের ভিত্তিতে পরিবার ৷ আকারের ভিত্তিতে পরিবার তিন প্রকার।যথা-১/একক পরিবার ২/যৌথ পরিবার ৩/বর্ধিত পরিবার। • বংশ মর্যাদা ও সম্পত্তির উত্তরাধিকারের ভিত্তিতে পরিবার ৷ এ ধরনের পরিবার তিন প্রকার।যথা-১/পিতৃসূত্রীয় পরিবার ২/মাতৃসূত্রীয় পরিবার,৩) উত্তরাধিকারসূত্রীয় পরিবার • বিবাহোত্তর স্বামী -স্ত্রীর বসবাসের ভিত্তিতে পরিবার ৷ এধরনের পরিবার তিন প্রকার।যথা-১/পিতৃবাস পরিবার ২/ মাতৃবাস পরিবার ৩/নয়াবাস পরিবার। • পাত্র-পাত্রী নির্বাচনের ভিত্তিতে পরিবার ৷ এ ভিত্তিতে পরিবার তিন'ধরনের।যথা-১/বহির্গোত্র পরিবার ২/অন্তর্গোত্র পরিবার,৩)উভয়র্গোত্র পরিবার • অন্তর্গোত্র পরিবার আবার দু প্রকার।যথা-১/অনুলোম বিবাহভিত্তিক পরিবার ২/প্রতিলোম বিবাহভিত্তিক পরিবার। আরও দেখুন সন্তানহীনতা অভিভাবক তথ্যসূত্র বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় (নবম- দশম শ্রেণী) আরও পড়ুন Mattox, William R., Jr., "America's family time famine" , Children Today, Nov–Dec, 1990 বহিঃসংযোগ Family database, OECD, Family Research Laboratory , unh.edu Family evolution and contemporary social transformations, seres.fcs.ucr.ac.cr (Estación de Economía Política) Family Facts: Social Science Research on Family, Society & Religion (a Heritage Foundation site). familyfacts.org Families Australia – independent peak not-for-profit organisation. familiesaustralia.org.au FAMILYPLATFORM - A consortium of 12 organisations providing input into the European Union's Socio-Economic and Humanities Research Agenda on Family Research and Family Policies. Unitedfamilies.org, International organisation UN.org, Families and Development Family, marriage and "de facto" unions, Vatican.va পরিবার মূল বিষয়ের নিবন্ধ সমাজ
https://en.wikipedia.org/wiki/Family
Family
Family (from Latin: familia) is a group of people related either by consanguinity (by recognized birth) or affinity (by marriage or other relationship). It forms the basis for social order. The purpose of the family is to maintain the well-being of its members and of society. Ideally, families offer predictability, structure, and safety as members mature and learn to participate in the community. Historically, most human societies use family as the primary purpose of attachment, nurturance, and socialization. Anthropologists classify most family organizations as matrifocal (a mother and her children), patrifocal (a father and his children), conjugal (a married couple with children, also called the nuclear family), avuncular (a man, his sister, and her children), or extended (in addition to parents, spouse and children, may include grandparents, aunts, uncles, or cousins). The field of genealogy aims to trace family lineages through history. The family is also an important economic unit studied in family economics. The word "families" can be used metaphorically to create more inclusive categories such as community, nationhood, and global village.
1243
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%96%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF
খাদ্য
আমরা যে সব বস্তু আহার করি তাকে আহার্য সামগ্রী বলে। কিন্তু সকল আহার্য সামগ্রীই খাদ্য নয়। যেমন, থোড় সেলুলোজ দিয়ে গঠিত হওয়ায় আমাদের পরিপাক নালীতে পাচিত হয় না। ফলে এটি পুষ্টি সহায়ক নয়। সুতরাং সেই সব আহার্য সামগ্রীকেই খাদ্য বলা যাবে, যা দেহের পুষ্টি ও বৃদ্ধি সহায়ক এবং তাপশক্তি উৎপাদনে সহায়তা করে। জীবদেহে শক্তির প্রধান উৎস হল খাদ্য। সালোকসংশ্লেষণ প্রক্রিয়াকালে সৌরশক্তি উদ্ভিজ খাদ্যের মধ্যে স্থৈতিক শক্তিরূপে আবদ্ধ হয়। জীবকোষে শ্বসনের সময় স্থৈতিক শক্তি তাপ শক্তি গতিশক্তিতে মুক্ত হয়, জীবদেহের যাবতীয় বিপাক ক্রিয়া, যেমন : শ্বসন, রেচন,পুষ্টি গ্রহণ ইত্যাদি এবং শারীরবৃত্তীয় ক্রিয়াকলাপ, যেমন-বৃদ্ধি, চলন-গমন, জনন ইত্যাদি নিয়ন্ত্রিত হয়। সুতরাং প্রাণ ধারণের জন্য প্রত্যেক জীবকেই খাদ্য গ্রহণ করতে হয়। তাই, যে সব আহার্য সামগ্রী গ্রহণ করলে জীবদেহের বৃদ্ধি, পুষ্টি, শক্তি উৎপাদন,ক্ষয়পূরণ হয় ও রোগ প্রতিরোধ করে তাকেই খাদ্য বলে। প্রকারভেদ জীবদেহে খাদ্যের কার্যকারিতা অনুযায়ী খাদ্য কে দু'ভাগে ভাগ করা হয়, যেমন- দেহ-পরিপোষক খাদ্য: যে সব খাদ্য দেহের গঠন, বৃদ্ধি ও শক্তি উৎপাদনে সহায়কারী, তাদের দেহ-পরিপোষক খাদ্য বলে। যেমন : শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট, আমিষ বা প্রোটিন এবং স্নেহপদার্থ বা ফ্যাট বা লিপিড। দেহ-সংরক্ষক খাদ্য: যে সব খাদ্য দেহকে রোগ সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা করে, শক্তি উৎপাদনে সহায়ক নয়, তাদের দেহ-সংরক্ষক খাদ্য বলে। যেমন : খাদ্যপ্রাণ বা ভিটামিন, খনিজ পদার্থ বা মিনারালস, জল। খাদ্যের উপাদান খাদ্যে ছ'টি উপাদান থাকে, যথা- শর্করা, আমিষ বা প্রোটিন, স্নেহপদার্থ, ভিটামিন বা খাদ্যপ্রাণ, খনিজ লবণ এবং জল। শর্করা বা কার্বোহাইড্রেট কার্বোহাইড্রেট যে সকল উপাদান দ্বারা গঠিত তা হল কার্বন, হাইড্রোজেন এবং অক্সিজেন। শর্করায় হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন ২:১ অনুপাতে থাকে। শর্করার আণবিক সংকেত ; যেমন গ্লুকোজ , সুক্রোজ ইত্যাদি। বেশিরভাগ খাদ্যে কম বেশি খাদ্য উপাদান থাকে। শর্করা বিভিন্ন রূপে বিভিন্ন খাদ্যে থাকে যেমন শ্বেতসার হিসেবে শর্করা যে সকল খাদ্যে পাওয়া যায় তা হল ধান বা চাল, গম, ভূট্টা, বাজরা, আলু, ওলকপি, কচু, বীট, গাজর ইত্যাদি। খেজুর, আঙ্গুর, আপেল ইত্যাদিতে শর্করা দ্রাক্ষাশর্করা বা গ্লুকোজ হিসেবে পাওয়া যায়। শাক-সবজি, বেল, তরমুজ, থোড় ইত্যাদিতে সেলুলোজ হিসেবে। আম, কলা, কমলালেবু প্রভৃতি পাকা ফলে ফল শর্করা বা ফুক্টোজ হিসেবে। চিনি, গুড়, মিছরী ইত্যাদিতে ইক্ষু শর্করা বা সুক্রোজ হিসেবে শর্করা উপস্থিত থাকে। দুধে দুগ্ধ শর্করা বা ল্যাক্টোজ হিসেবে এবং পাঁঠার যকৃৎ ও পেশীতে গ্লাইকোজেন বা প্রাণীজ শ্বেতসার হিসেবে শর্করা পাওয়া যায়। প্রত্যেক অণুতে সরল শর্করার এক বা একাধিক এককের উপস্থিতি অনুসারে কার্বোহাইড্রেটকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ছে। এগুলো হল যথা: মনোস্যাকারাইড:যেসব শর্করা একটি মাত্র অণু দ্বারা গঠিত, তাকে মনোস্যাকারাইড বলে। যথা: গ্লুকোজ, ফ্রুক্টোজ ও গ্যালাকটোজ। ডাইস্যাকারাইড:যেসব শর্করা দুটি অণু দ্বারা গঠিত, তাকে ডাইস্যাকারাইড বলে। যেমন: সুক্রোজ, ল্যাকটোজ ও মলটোজ। পলিস্যাকারাইড:যেসব শর্করা অনেক অণু দ্বারা গঠিত, তাকে পলিস্যাকারাইড বলে। যেমন: স্টার্চ, গ্লাইকোজেন ও সেলুলোজ। শর্করা দেহে পুষ্টি জুগিয়ে গুরুত্বপূর্ণ কাজ করে। দেহের কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি এবং তাপ শক্তি উৎপাদন করে সেইসাথে খাদ্য হজমে সহায়তা করে কোষ্ঠ দূর করতে (সেলুলোজ) ভূমিকা রাখে। গ্লাইকোজেন যকৃত ও পেশীতে সঞ্চিত থাকে যা প্রয়োজনের সময় গ্লুকোজে পরিণত হয়ে দেহে অতিরিক্ত তাপ শক্তি উৎপাদন করে এবং রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ স্বাভাবিক রাখে। ১ গ্রাম শর্করা ৪ কিলোক্যালরি তাপ উৎপন্ন করে। রক্তে গ্লুকোজের স্বাভাবিক পরিমাণ হল প্রতি ১০০ মিলি. রক্তে ৮০-১২০ মিলিগ্রাম। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ্য যে, প্রাণিজ প্রোটিন গ্রহণ না করেও শুধুমাত্র প্রচুর পরিমাণে শ্বেতসার জাতীয় খাদ্য খেয়ে মানুষ সুস্থ শরীরে দীর্ঘদিন যাবৎ বেঁচে থাকতে পারে। এই জন্য শ্বেতসার জাতীয় খাদ্যকে প্রোটিন বাঁচোয়া খাদ্য বলে আমিষ বা প্রোটিন প্রোটিন-অণু অসংখ্য অ্যামাইনো অ্যাসিডের সমন্বয়ে গঠিত হয়। এই পর্যন্ত প্রায় ২২ টি অ্যামাইনো অ্যাসিড পাওয়া গেছে। এতে রয়েছে [কার্বন]], হাইড্রোজেন, অক্সিজেন এবং নাইট্রোজেন। অনেক সময় সালফার এবং ফসফরাসও প্রোটিনে থাকে। মাছ, মাংস, ডিম, দুধ, ছানা ইত্যাদিতে প্রাণিজ প্রোটিন এবং ডাল, সয়াবিন, বীন, গম ইত্যাদিতে উদ্ভিজ্জ প্রোটিন পাওয়া যায়। প্রাণীজ প্রোটিনে অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিডের প্রায় সবগুলিই থাকে বলে প্রাণিজ প্রোটিনকে প্রথম শ্রেণীর প্রোটিন বলা হয়। প্রোটিনকে প্রধানত তিন ভাগে ভাগ করা যায়। যে সব প্রোটিন অন্য কোন উপাদানের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে না, তাদের সরল প্রোটিন বলে। উদাহরণ হল অ্যালবুমিন, গ্লোবিউলিন, প্রোটমিন, হিস্টোন, গ্লায়াডিন, গ্লুটেলিন ইত্যাদি। অন্যদিকে সরল প্রোটিন যখন অন্য কোন উপাদানের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তখন তাদের সংযুক্ত প্রোটিন বলে। যেমন হিমোগ্লোবিন, হিমোসায়ানিন, ফসফোপ্রোটিন, লাইপোপ্রোটিন ইত্যাদি। আরেকটি প্রোটিন রয়েছে যা পরিপাক নালীতে প্রোটিন জাতীয় খাদ্য পরিপাকের সময় উদ্ভূত হয়, তাদের লব্ধ প্রোটিন বলে। যেমন পেপটন, পেপটাইড ইত্যাদি। প্রোটিন দেহের বৃদ্ধি, কোষ গঠন ও ক্ষয়পূরণ করে। তাপ শক্তি উৎপাদন করে। দেহস্থ উৎসেচক, হরমোন ইত্যাদি সৃষ্টি করতে ভূমিকা রাখে। অপরিহার্য অ্যামাইনো অ্যাসিডের চাহিদা পূরণ করা হল প্রোটিনের অন্যতম কাজ। এই প্রসঙ্গে উল্লেখ করা যায় যে, ১ গ্রাম প্রোটিন জারিত হলে ৪.১ কিলোগ্ৰাম ক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক লোকের প্রত্যহ প্রায় ১০০-১৫০ গ্রাম প্রোটিন জাতীয় খাদ্যের প্রয়োজন। স্নেহপদার্থ কার্বন, হাইড্রোজেন, এবং অক্সিজেন নিয়ে স্নেহপদার্থ বা ফ্যাট গঠিত হয়। স্নেহ পদার্থে অক্সিজেন অনুপাত শর্করার তুলনায় কম এবং শর্করার মত হাইড্রোজেন ও অক্সিজেন ২:১ অনুপাতে থাকে না। ফ্যাট প্রকৃতপক্ষে ফ্যাটি অ্যাসিড এবং গ্লিসারলের সমন্বয়ে গঠিত এস্টার বিশেষ। প্রকৃতিতে প্রচুর খাদ্য হতে কম বেশি স্নেহ পদার্থ পাওয়া যায়। যেমন বাদাম, নারিকেল, সরষে, রেড়ী বীজ, তুলা বীজ ইত্যাদিতে উদ্ভিজ্জ ফ্যাট থাকে এবং মাখন, ঘি, চর্বি ইত্যাদিতে প্রাণীজ ফ্যাট থাকে। সাধারণ উত্তাপে যে সমস্ত ফ্যাট তরল অবস্থায় থাকে, তাদের তেল হিসেবে জানি আমরা। যে সব ফ্যাট অন্য কোন উপাদানের সঙ্গে সংযুক্ত থাকে না, তাদের সরল ফ্যাট বলে। যথা: ওয়াক্স বা মোম, ল্যানোলিন ইত্যাদি সরল ফ্যাটের উদাহরণ। সরল ফ্যাট যখন অন্য কোন উপাদানের সঙ্গে যুক্ত থাকে, তখন তাদের যৌগিক ফ্যাট বলে। যথা: ফসফোলিপিড, গ্লাইকোলিপিড, অ্যামাইনো-লিপিড ইত্যাদি। প্রাণীদেহের তাপ নিয়ন্ত্রণ ও তাপ শক্তি উৎপন্ন করা ফ্যাট জাতীয় খাদ্যের প্রধান কাজ। ফ্যাট মেদরুপে ভবিষ্যতের খাদ্যের উৎস হিসাবে সঞ্চিত থাকে। ফ্যাট ভিটামিনকে দ্রবীভূত রাখে এবং এদের শোষণে সাহায্য করে। ফ্যাট যকৃৎ থেকে পিওরস এবং অগ্ন্যাশয় থেকে অগ্ন্যাশয় রস নিঃসরণে সাহায্য করে। স্নেহপদার্থ মলাশয় ও পায়ু পিচ্ছিল করে মল নিঃসরণে সহায়তা করে। কোলেস্টেরল নামক ফ্যাট থেকে ভিটামিন-ডি, ইস্ট্রোজেন, টেস্টোস্টেরণ নামক হরমোন উৎপন্ন হয়। ১ গ্রাম ফ্যাট জারিত হলে ৯.৩ কিলোগ্ৰাম ক্যালরি শক্তি উৎপন্ন হয়। একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের প্রত্যহ প্রায় ৫০ গ্রাম স্নেহপদার্থ প্রয়োজন। ভিটামিন যে বিশেষ জৈব পরিপোষক সাধারণ খাদ্যে অতি অল্প পরিমাণে থেকে দেহের স্বাভাবিক পুষ্টি ও বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এবং রোগপ্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি করে, তাকে ভিটামিন বলে। দ্রাব্যতা অনুসারে ভিটামিনগুলিকে দুভাগে ভাগ করা হয়। যে সব ভিটামিন তেল বা স্নেহপদার্থে দ্রবীভূত হয়, তাদের স্নেহপদার্থে দ্রবণীয় ভিটামিন বলে। যেমন: ভিটামিন এ, ভিটামিন ডি, ভিটামিন ই, ভিটামিন কে। অন্যদিকে যে সব ভিটামিন জলে দ্রবীভূত হয়, তাদের জলে দ্রবণীয় ভিটামিন বলে। যেমন ভিটামিন বি, ভিটামিন সি এবং ভিটামিন পি। ভিটামিন দুধ, ডিম, মাছ, মাংস, প্রাণীদের যকৃৎ, মাছের যকৃৎ হতে নিঃসৃত তেল, মাখন, উদ্ভিজ্জ তেল, বাদাম, ঢেঁকিছাটা চাল, লাল আটা, ছোলা, মুগ, বীট, গাজর, মটরশুঁটি, পালংশাক, টমেটো, বাঁধাকপি, ফুলকপি, লেবু, আম, আমলকি, আপেল ইত্যাদিতে পাওয়া যায়। ভিটামিনের এই সব উৎসের মধ্যে দুধ, ডিম, পালংশাক, টমেটো, মটরশুঁটি, কলা, আপেল ইত্যাদিতে বেশীর ভাগ ভিটামিন পাওয়া যায়। ভিটামিন এ এবং ডি এর উৎস মোটামুটি এক, যেমন : কড্, হ্যালিবাট যকৃত নিঃসৃত তেল (লিভার অয়েল), মাখন, দুধ, ডিম,গাজর, বাঁধাকপি, ইত্যাদি। খনিজ লবণ খনিজ লবণ হল অজৈব খাদ্য উপাদন। এরা শক্তি সরবরাহ করে না। খনিজ লবণ জীব দেহের স্বাভাবিক পুষ্টির অভাব পূরণ করে। জীব দেহের স্বাভাবিক বৃদ্ধির জন্য খনিজ লবণের প্রয়োজন। রোগ প্রতিরোধের ক্ষমতা বৃদ্ধি ও তৈরি করতে খনিজ লবণ অত্যন্ত প্রয়োজন। পানি বা জল পানি বা জল খাদ্যের একটি উপাদান। মানবদেহের জন্য পানি অপরিহার্য। দেহের গঠন এবং অভ্যন্তরীণ কাজ জল ছাড়া চলতে পারে না। আমাদের দৈহিক ওজনের ৬০-৭০% পানি। আমাদের রক্ত মাংস, স্নায়ু, দাঁত, হাড় ইত্যাদি প্রতিটি অঙ্গ গঠনের জন্য পানি প্রয়োজন। জীবের প্রয়োজনীয় খাদ্য ও গ্যাসীয় উপাদান জল-মাধ্যমেই কোষ থেকে কোষে যায়। কোষের অপ্রয়োজনীয় পদার্থ জল-মাধ্যমেই বাহিত হয়ে নির্দিষ্ট রেচন অঙ্গে যেতে পারে। উন্নত উদ্ভিদেরা মাটি থেকে মূলরোমের সাহায্যে জল শোষণ করে। প্রাণীরা খাদ্যদ্রব্য থেকে জল সংগ্রহ করে এবং আলাদাভাবে শুধু জল পানও করে। জীবদেহে জলের কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ নীচে বর্ণনা করা হল: [১] জল প্রোটোপ্লাজমের প্রধান উপাদান। [২] জল-মাধ্যমে ব্যাপন, অভিস্রবণ, শোষণ ইত্যাদি ভৌত প্রক্রিয়াগুলি জীবদেহে সাধিত হয়। [৩] সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়ায় সবুজ উদ্ভিদ পরিবেশ থেকে জল গ্রহণ করে। জল ছাড়া সালোকসংশ্লেষ সম্ভব নয়। [৪] উদ্ভিদ-দেহের অতিরিক্ত জল বাষ্পমোচনে পরিত্যক্ত হয় বলে উদ্ভিদের দেহের পরিবেশ ঠাণ্ডা থাকে এবং উদ্ভিদ আরও জল শোষণ করতে সক্ষম হয়। [৫] জীবকোষে অধিকাংশ বিপাকীয় কাজ জলের উপস্থিতিতে ঘটে। [৬] জীবদেহের বিভিন্ন অংশের ঘর্ষণজনিত আঘাত থেকে জল রক্ষা করে। [৭] জীবদেহে পরিবহণের ব্যবস্থা একান্তভাবেই জলনির্ভর। জল ছাড়া পরিবহণ সম্ভব নয়। [৮] প্রাণীদের দেহে তাপমাত্রা বজায় রাখতে জল সাহায্য করে। [৯] জলের উপস্থিতিতে আয়ন গঠন তাড়াতাড়ি হয়। [১০] জল মাধ্যমে বিভিন্ন উৎসেচক তাদের কর্মক্ষমতা বজায় রাখে। [১১] কোষের রসস্ফীতির চাপ বজায় রেখে কোষের বা সমগ্র দেহের নির্দিষ্ট আকার রাখতে জল সাহায্য করে। জলের অভাবে, জলশূন্যতা (dehydration) উপসর্গ দেখা দেয়। (১২) বিভিন্ন খনিজ লবণ জল-মাধ্যমে জীবদেহে গৃহীত হয়। উল্লেখ্য, ৭০ কিলোগ্রাম ওজনের মানুষের দেহে প্রায় ৪৭ লিটার জল থাকে। মানুষের চামড়ায় ২০%, পেশীতে ৭৫%, রক্ত-কণিকায় ৬০%, রক্ত রসে ৯২% জন থাকে। খাদ্য উৎস গ্রামের সব থেকে বেশি লাভজনক চাষের জন্য উপযোগী জমি, বীজ জল ব্যবস্থা থাকা দরকার। গ্রামগঞ্জে সব থেকে বেশি চাষ হয় গম,ধান, সবজি, ভুট্টা, পেঁয়াজ, আলু । বেশিরভাগ খাবারের উদ্ভব হয় উদ্ভিদ থেকে। কিছু খাবার সরাসরি উদ্ভিদ থেকে পাওয়া যায়; এমনকি প্রাণীদের খাদ্যের উৎস হিসাবে আমরা গাছপালা থেকে প্রাপ্ত খাবারকেই বিবেচনা করি। সিরিয়াল নামক শস্যটি হ'ল একটি প্রধান খাদ্য যা অন্য যে কোনও ফসলের চেয়ে বিশ্বজুড়ে বেশি খাদ্যশক্তি সরবরাহ করে। বিশ্বব্যাপী সমস্ত শস্য উৎপাদনের ৮৭ ভাগ জুড়ে আছে ভুট্টা, গম এবং চাল (তাদের বিভিন্ন জাত মিলিয়ে)। বিশ্বব্যাপী উৎপাদিত বেশিরভাগ শস্য প্রাণীসম্পদগুলিকে বৃদ্ধি করতে খাওয়ানো হয়। উদ্ভিদ উৎস থেকে প্রাপ্ত কিছু খাবারের মধ্যে বিভিন্ন ভোজ্য ছত্রাক, বিশেষত মাশরুম অন্তর্ভুক্ত । খামিরযুক্ত এবং আচারযুক্ত খাবার যেমন খামিরযুক্ত রুটি, অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়, পনির, আচার, কম্বুচা এবং দই তৈরিতে ছত্রাক এবং ব্যাকটেরিয়া ব্যবহার করা হয়। আর একটি উদাহরণ হল নীল-সবুজ শেত্তলা যেমন স্পিরুলিনা। অ জৈবজাতীয় পদার্থ যেমন লবণ, বেকিং সোডা এবং টারটার ক্রিম ব্যবহার করে কোনও উপাদান সংরক্ষণ বা রাসায়নিকভাবে পরিবর্তিত করতে ব্যবহৃত হয়। উদ্ভিদ অনেক গাছপালা এবং উদ্ভিদের অংশ খাদ্য হিসাবে খাওয়া হয় এবং প্রায় ২,০০০ উদ্ভিদ প্রজাতি খাদ্যের জন্য চাষ করা হয়। এই উদ্ভিদগুলোর বিভিন্ন প্রজাতির বিভিন্ন স্বতন্ত্র জাত রয়েছে । মানুষ সহ অন্যান্য প্রাণীর জন্য গাছের বীজ হ'ল খাবারের একটি উৎস, কারণ এগুলিতে ওমেগা ফ্যাটগুলির মতো অনেক স্বাস্থ্যকর ফ্যাট সহ উদ্ভিদের প্রাথমিক বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজনীয় পুষ্টি থাকে। আসলে, মানুষের ভোজ্য বেশিরভাগ খাদ্যই বীজভিত্তিক। ভোজ্য বীজের মধ্যে সিরিয়াল ( ভুট্টা, গম, চাল, ইত্যাদি ), বীচি জাতীয় ( শিম, মটরশুটি, মসুর ডাল, ইত্যাদি) এবং বাদাম রয়েছে । তেলবীজগুলিকে প্রায়শই সমৃদ্ধ তেল উৎপাদন করতে পিষে নেওয়া হয় যেমন সূর্যমুখী, ফ্ল্যাকসিড, রেপসিড ( ক্যানোলা তেলসহ), তিল ইত্যাদি। বীজগুলিতে সাধারণত অসম্পৃক্ত চর্বি বেশি থাকে এবং পরিমিত স্বাস্থ্যকর খাদ্য হিসাবে বিবেচিত হয়। তবে, সমস্ত বীজই ভোজ্য নয়। বড় বীজ, যেমন লেবু থেকে পাওয়া বীজ দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার ঝুঁকি তৈরি করে, অন্যদিকে চেরি এবং আপেলের বীজগুলিতে সায়ানাইড থাকে যা কেবলমাত্র অধিক পরিমাণে খাওয়া হলে তা বিষক্রিয়া তৈরি করতে পারে। ফল হল গাছের পূর্ণাঙ্গ পাকাপোক্ত ডিম্বাশয়,এর মধ্যে বীজ আছে। অনেক উদ্ভিদ বিবর্তিত বেশিরভাগ ফলের মধ্যে মিষ্টি,টক,কষ,স্বাদবিহীন বিভিন্ন স্বাদের ফল হয়ে থাকে,বিভিন্ন ঘ্রাণযুক্ত ও ঘ্রাণহীন ফলের উপস্থিতি পরিলক্ষিত হয়। খাদ্যাভ্যাসের একটি উল্লেখযোগ্য অংশ হল ফল। টমেটো, কুমড়ো এবং বেগুনের মতো কিছু বোটানিকাল ফল সবজি হিসাবে খাওয়া হয়। (আরও তথ্যের জন্য, ফলের তালিকা দেখুন। ) শাকসবজি দ্বিতীয় ধরনের উদ্ভিদজ খাদ্য উৎস যা সাধারণত খাদ্য হিসাবে খাওয়া হয়। এর মধ্যে আছে শিকড় জাতীয় শাকসবজি ( আলু এবং গাজর ), স্তরজাতীয় ( পেঁয়াজ পরিবার), গাছের পাতা জাতীয় ( শাক এবং লেটুস ), ডাঁটা জাতীয় শাকসবজি ( বাঁশের কাণ্ড এবং শতমূলী), এবং পুষ্পবিন্যাস শাকসবজি ( গ্লোব আর্টিচোক এবং ব্রোকলি এবং অন্যান্য শাকসবজি যেমন বাঁধাকপি বা ফুলকপি)। প্রাণী উৎপাদিত প্রাণীসম্পদ তাদের দিয়ে তৈরি করা পণ্যে প্রত্যক্ষ বা অপ্রত্যক্ষভাবে হিসাবে ব্যবহৃত হয়। প্রাণীর কাছ থেকে নেওয়া মাংস হল প্রত্যক্ষ পণ্যের উদাহরণ, যা পেশী সিস্টেমগুলি বা অঙ্গগুলি ( অফাল ) থেকে আসে। প্রাণীদের দ্বারা উৎপাদিত খাদ্য পণ্যগুলির মধ্যে স্তন্যপায়ী গ্রন্থিগুলির দ্বারা উৎপাদিত দুধও রয়েছে, যা অনেক সংস্কৃতিতে ডুবিয়ে বা ডেইরি প্রক্রিয়াজাত করতে ব্যবহৃত হয় যেমন পনির, মাখন ইত্যাদি। এছাড়াও, পাখি এবং অন্যান্য প্রাণী যারা ডিম দেয় তা প্রায়শই খাওয়া যায় এবং মৌমাছিরা মধু উৎপাদন করে (ফুল থেকে একটি আহরিত অমৃত) যা অনেক সংস্কৃতিতে একটি জনপ্রিয় মিষ্টি খাদ্য। কিছু সংস্কৃতিতে রক্ত খাদ্য হিসেবে খাওয়া হয়। কখনও কখনও রক্ত সসেজ হিসেবে যা সস ঘন করতে ব্যবহৃত হয় বা খাদ্য ঘাটতির সময়ে একটি নিরাময়কৃত, লবণাক্ত আকারে তা খাওয়া হয় এবং অন্যরা স্টিউতে রক্ত ব্যবহার করে যেমন ভাপে সিদ্ধ খরগোশ রান্নায়। কিছু রীতি নীতির অনুসারে এবং কোন কোন মানুষ সাংস্কৃতিক কারনে, খাদ্যাভ্যাসের জন্য, স্বাস্থ্য রক্ষায়, নৈতিক কারণে বা আদর্শগত কারণে মাংস বা পশু খাদ্য পণ্য গ্রহণ করেন না। নিরামিষাশীরা প্রাণীজ উৎস থেকে শুরু করে বিভিন্ন পর্যায়ের খাবার ত্যাগ করতে পছন্দ করেন। নিরামিষবাদীরা কোনও প্রাণীর উৎস থেকে উপাদান নিয়ে বা প্রাণীজ উৎস থাকে এমন কোনও খাবার গ্রহণ করে না। আরও দেখুন Bulk foods বেভারেজ Food and Bioprocess Technology খাদ্য প্রকৌশল ফুড ইনকর্পোরেটেড, ২০০৯ সালে একটি ডকুমেন্টারি খাদ্য বিজ্ঞান আগামীর খাদ্য প্রযুক্তি Industrial crop খাদ্যের তালিকা প্রস্তুতকৃত খাবারের তালিকা Optimal foraging theory রান্নার রূপরেখা পুষ্টির রূপরেখা আরও পড়ুন কলিংহাম, ইএম (২০১১)। যুদ্ধের স্বাদ: দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ এবং খাবারের যুদ্ধ কাটজ, সলোমন (২০০৩) খাদ্য ও সংস্কৃতি এনসাইক্লোপিডিয়া, স্ক্রিবনার নেসলে, মেরিয়ন (২০০৭)। খাদ্য রাজনীতি: কীভাবে খাদ্য শিল্প পুষ্টি ও স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে, ক্যালিফোর্নিয়ার বিশ্ববিদ্যালয় প্রেসস, সংশোধিত এবং প্রসারিত সংস্করণ, মোবস, মাইকেল (২০১২) টেকসই খাবার সিডনি: নিউ সাউথ পাবলিশিং, ভবিষ্যতের খাদ্য (২০১৫)। 2015 ডিজিটাল লাইফ ডিজাইন (ডিএলডি) বার্ষিক সম্মেলনে একটি প্যানেল আলোচনা "কীভাবে আমরা বাড়ির নিকটে, ভবিষ্যতে আরও খাদ্য বাড়িয়ে উপভোগ করতে পারি? MIT মিডিয়া ল্যাব এর কেভিন স্লেভিন খাদ্য শিল্পী, শিক্ষাবিদ, এবং MIT মিডিয়া ল্যাব এর CityFarm প্রকল্প, অসভ্য গ্রুপের বেঞ্জামিন পামার, এবং Andras Forgacs, আধুনিক তৃণভূমির সহ-প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা থেকে উদ্যোক্তা এমিলি Baltz, তথ্যসূত্র উৎস Aguilera, Jose Miguel and David W. Stanley. Microstructural Principles of Food Processing and Engineering. Springer, 1999. . . Asado Argentina. About Asado Argentina. Retrieved from http://www.asadoargentina.com/about-asado-argentina/ on 2007-05-28. Campbell, Bernard Grant. Human Evolution: An Introduction to Man's Adaptations. Aldine Transaction: 1998. . Carpenter, Ruth Ann; Finley, Carrie E. Healthy Eating Every Day. Human Kinetics, 2005. . Davidson, Alan. The Oxford Companion to Food. 2nd ed. UK: Oxford University Press, 2006. Food and Agriculture Organization of the United Nations. The State of Food Insecurity in the World 2005. . Retrieved from http://www.fao.org/docrep/008/a0200e/a0200e00.htm on 2006-09-29. Hannaford, Steve. Oligopoly Watch: Top 20 world food companies. Retrieved from https://web.archive.org/web/20090918101335/http://www.oligopolywatch.com/2005/10/06.html on 2006-09-23. Howe, P. and S. Devereux. Famine Intensity and Magnitude Scales: A Proposal for an Instrumental Definition of Famine. 2004. Humphery, Kim. Shelf Life: Supermarkets and the Changing Cultures of Consumption. Cambridge University Press, 1998. . . Jango-Cohen, Judith. The History Of Food. Twenty-First Century Books, 2005. . Jurgens, Marshall H. Animal Feeding and Nutrition. Kendall Hunt, 2001. . . Kripke, Gawain. Food aid or hidden dumping?. Oxfam International, March 2005. Retrieved from https://web.archive.org/web/20060714133231/http://www.oxfam.org/en/policy/briefingpapers/bp71_food_aid_240305 on 2007-05-26. Lawrie, Stephen; R.A. Lawrie. Lawrie's Meat Science. Woodhead Publishing: 1998. . Magdoff, Fred; Foster, John Bellamy; and Buttel, Frederick H. Hungry for Profit: The Agribusiness Threat to Farmers, Food, and the Environment. September 2000. . Mason, John. Sustainable Agriculture. Landlinks Press: 2003. . Merson, Michael H.; Black, Robert E.; Mills, Anne J. International Public Health: Disease, Programs, Systems, and Policies. Jones and Bartlett Publishers, 2005. McGee, Harold. On Food and Cooking: The Science and Lore of the Kitchen. New York: Simon & Schuster, 2004. . Mead, Margaret. The Changing Significance of Food. In Carole Counihan and Penny Van Esterik (Ed.), Food and Culture: A Reader. UK: Routledge, 1997. . Messer, Ellen; Derose, Laurie Fields and Sara Millman. Who's Hungry? and How Do We Know?: Food Shortage, Poverty, and Deprivation. United Nations University Press, 1998. . National Institute of Health. Food poisoning. MedlinePlus Medical Encyclopedia F. 11 May 2006. Retrieved from https://web.archive.org/web/20060928222906/http://www.niaid.nih.gov/publications/pdf/foodallergy.pdf on 2006-09-29. Nicklas, Barbara J. Endurance Exercise and Adipose Tissue. CRC Press, 2002. . Parekh, Sarad R. The Gmo Handbook: Genetically Modified Animals, Microbes, and Plants in Biotechnology. Humana Press,2004. . Regmi, Anita (editor).Changing Structure of Global Food Consumption and Trade. Market and Trade Economics Division, Economic Research Service, USDA, 30 May 2001. stock #ERSWRS01-1. Schor, Juliet; Taylor, Betsy (editors). Sustainable Planet: Roadmaps for the Twenty-First Century. Beacon Press, 2003. . Shah, Anup. Food Dumping (Aid) Maintains Poverty. Causes of Poverty. Retrieved from http://www.globalissues.org/TradeRelated/Poverty/FoodDumping.asp on 2006-09-29. Simoons, Frederick J. Eat Not This Flesh: Food Avoidances from Prehistory to the Present. . Smith, Andrew (Editor). “Food Marketing,” in Oxford Encyclopedia of American Food and Drink, New York: Oxford University Press, 2007. . The Economic Research Service of the USDA. Global Food Markets: Briefing Rooms. Retrieved from https://web.archive.org/web/20170704104430/https://www.ers.usda.gov/topics/international-markets-trade/global-food-markets.aspx on 2006-09-29. United Kingdom Office of Public Sector Information. Food Safety Act 1990 (c. 16). Retrieved from http://www.opsi.gov.uk/acts/acts1990/Ukpga_19900016_en_2.htm#mdiv1 on 2006-11-08. . . United States Department of Agriculture, USDA Economic Research Service: The Economics of Food, Farming, Natural Resources, and Rural America. "Briefing Rooms, Food CPI, Prices and Expenditures: Food Expenditure Tables". Retrieved from http://www.ers.usda.gov/data-products/food-price-outlook.aspx on 2007-06-06. Van den Bossche, Peter. The Law and Policy of the bosanac Trade Organization: Text, Cases and Materials. UK: Cambridge University Press, 2005. . World Food Programme. Breaking out of the Poverty Trap: How We Use Food Aid. Retrieved from https://web.archive.org/web/20060928075506/http://www.wfp.org/food_aid/introduction/index.asp?section=12&sub_section=1 on 2006-09-29. World Health Organization. WHO Global Database on Child Growth and Malnutrition. Retrieved from http://www.who.int/nutgrowthdb/en/ on 2006-09-29. World Trade Organization. The Uruguay Round. Retrieved from https://web.archive.org/web/20060822200650/http://www.wto.org/trade_resources/history/wto/urug_round.htm on 2006-09-29. . বহিঃ সংযোগ খাদ্য টাইমলাইন উইকিবুকস কুকবুক পুষ্টি খাদ্য খাদ্য ও পানীয়
https://en.wikipedia.org/wiki/Food
Food
Food is any substance consumed by an organism for nutritional support. Food is usually of plant, animal, or fungal origin and contains essential nutrients such as carbohydrates, fats, proteins, vitamins, or minerals. The substance is ingested by an organism and assimilated by the organism's cells to provide energy, maintain life, or stimulate growth. Different species of animals have different feeding behaviours that satisfy the needs of their metabolisms and have evolved to fill a specific ecological niche within specific geographical contexts. Omnivorous humans are highly adaptable and have adapted to obtain food in many different ecosystems. Humans generally use cooking to prepare food for consumption. The majority of the food energy required is supplied by the industrial food industry, which produces food through intensive agriculture and distributes it through complex food processing and food distribution systems. This system of conventional agriculture relies heavily on fossil fuels, which means that the food and agricultural systems are one of the major contributors to climate change, accounting for as much as 37% of total greenhouse gas emissions. The food system has significant impacts on a wide range of other social and political issues, including sustainability, biological diversity, economics, population growth, water supply, and food security. Food safety and security are monitored by international agencies like the International Association for Food Protection, the World Resources Institute, the World Food Programme, the Food and Agriculture Organization, and the International Food Information Council.
1245
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A7%8D%E0%A6%AF
স্বাস্থ্য
মানুষ ও অন্যান্য প্রাণীদের স্বাস্থ্য বিষয়ক বিজ্ঞানের জন্য দেখুন স্বাস্থ্য বিজ্ঞান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা স্বাস্থ্য সম্পর্কিত ১০টি মানদন্ড হল—একঃ কর্মশক্তি-সম্পন্ন, স্বাভাবিকভাবে জীবনের বিভিন্ন কাজ মোকাবেলা করতে পারে। দুইঃ আশাবাদী, সক্রিয় দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করতে পারে। তিনঃ নিয়মিত বিশ্রাম নেয়, ঘুম ভাল। চারঃ পরিবেশের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারে, বিভিন্ন অবস্থার মোকাবেলা করতে পারে। পাঁচঃ সাধারণ সর্দি ও সংক্রামক রোগ প্রতিরোধক শক্তি আছে। ছয়ঃ ওজন সঠিক, শরীরের সংগঠনিক দিক সঠিক। সাতঃ চোখ উজ্জ্বল, কোনো প্রদাহ রোগ নেই। আটঃ দাঁত পরিষ্কার এবং সতেজ, ব্যাথা নেই, দাঁতের মাঢ়ির রং স্বাভাবিক। নয়ঃ চুলে উজ্জ্বতা আছে, খুশকি নেই। দশঃ হাড় স্বাস্থ্যবান, পেশি ও ত্বক নমনীয়, হাঁটাহাঁটি করলে কোনো অসুবিধা নেই। বহিঃসংযোগ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ওইসিডি হেলথ্ স্ট্যাটিসটিকস্ 'Defying Death' অনলাইন ভিডিও অন ডিজিস (Provided by the Vega Science Trust). হেলথ্ এণ্ড মেডিক্যাল ইনফরম্যাশন from UCB Libraries GovPubs স্বাস্থ্য ব্যক্তিগত জীবন মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Health
Health
Health has a variety of definitions, which have been used for different purposes over time. In general, it refers to physical and emotional well-being, especially that associated with normal functioning of the human body, absent of disease, pain (including mental pain), or injury. Health can be promoted by encouraging healthful activities, such as regular physical exercise and adequate sleep, and by reducing or avoiding unhealthful activities or situations, such as smoking or excessive stress. Some factors affecting health are due to individual choices, such as whether to engage in a high-risk behavior, while others are due to structural causes, such as whether the society is arranged in a way that makes it easier or harder for people to get necessary healthcare services. Still, other factors are beyond both individual and group choices, such as genetic disorders.
1246
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%98%E0%A6%B0
ঘর
ঘর বলতে মানুষের বসবাসের জন্য নির্মিত কাঠামোকে বোঝায়। ঘর মূলত এক কক্ষের আবাসিক দালান যা কাঠ, কংক্রিট বা অন্য কোনো উপাদানের সাহায্যে রাজমিস্ত্রির দ্বারা তৈরি করা হয়, যেখানে পানি, বিদ্যুৎ, তাপ বা বাতানুকূলতার সুবিধা থাকতে পারে। গৃহ শব্দ থেকে ঘর শব্দটি এসেছে। ঘর শব্দের অন্যান্য সমার্থক শব্দগুলো হচ্ছে - ভবন, আলয়, আবাস, নিবাস ইত্যাদি। ঘরের ভিতর বৃষ্টির পানি প্রবেশ প্রতিরোধের জন্য বিভিন্ন রকম ছাদ নির্মাণ করা হয়ে থাকে। ঘরের ভিতরে থাকা জিনিসপত্র এবং বাসিন্দাদের চোর বা অন্য কোনো ক্ষতিকারক প্রাণী বা মানুষের থেকে সুরক্ষার জন্য তালা লাগিয়ে রাখা হয়। পশ্চিমি ঘরনার সকল বাড়ির এক বা একাধিক শয়ন কক্ষ, স্নানঘর, রান্নাঘর এবং বসার কক্ষ থাকে। কিছু বাড়িতে আলাদা খাওয়ার ঘর অথবা খাওয়ার কক্ষ অন্য ঘরের বর্ধিত অংশে থাকতে পারে। কিছু বাড়িতে বিনোদন কক্ষের উপস্থিতি দেখতে পাওয়া যায়। কৃষিপ্রধান এলাকাগুলোতে গৃহপালিত পশু-পাখির জন্য আলাদা ঘরের ব্যবস্থা রাখা হয়। আদিকালে মানুষ প্রকৃতির রুদ্ররোষ থেকে বাঁচার জন্য পাহাড়-পর্বতের গুহায় অবস্থান করতো। সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে মানুষ ওই গুহাকেই নিজের ঘর হিসেবে ভাবতে শেখে। পরবর্তীতে মানুষ তার তীক্ষ্ণ বিচারবুদ্ধি, ক্ষমতা, দক্ষতা প্রয়োগ করে কালের পরিক্রমায় বর্তমানে ঘরে অবস্থান করছে। ঘর তৈরি করে মানুষ সংসারী হয়েছে। সাধারণত বসবাস করার উপযোগী ঘর তৈরিতে বাঁশের খুঁটি, টিনসহ অন্যান্য সহায়ক সামগ্রীর দরকার পড়ে। ঘর বাঁধা কিংবা কুটীর নির্মাণে কুঁড়েঘরে ধানের খড় কিংবা পাটকাঠির ছাউনি দেওয়ার প্রচলন ছিল তিন/চার দশক পূর্বে। বর্তমানে এগুলোর পাশাপাশি ইট, বালু, সিমেন্ট, লোহার প্রচলন বেশ বেড়ে গেছে। ঘরের প্রকারভেদ হিসেবে - কুঁড়েঘর, টিনের ঘর, দালান, মাটির ঘর, আধা-পাকা ঘর ইত্যাদি প্রস্তুত করা হয়। গৃহকর্তার অর্থনৈতিক স্বচ্ছলতার ওপর ঘরের স্তরগুলো লক্ষ্য করা যায়। সামাজিকভাবে নিজস্ব ঘরকে বাড়ি এবং যারা অন্যের বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকেন, তাদেরকে ঘর শব্দের পরিবর্তে বাসা হিসেবে আখ্যায়িত করতে দেখা যায়। ব্যক্তি হিসেবে পুরুষ তার স্ত্রীকে ঘরণী কিংবা গৃহলক্ষ্মী হিসেবে দেখে থাকে। গৃহিণী হিসেবে পুরুষের সাথে থাকাকে ঘর করা বলে। এছাড়ও, বৈবাহিক সম্বন্ধ স্থাপনের উপযোগী বংশ অন্বেষণকে ঘর খোঁজা বলে। দুঃখজনক সংবাদ হিসেবে ঘর ভাঙানো শব্দটি সত্যিকার অর্থেই বেশ কষ্টকর। কুমন্ত্রণা, ব্যক্তির চরিত্র, মানসিক ভারসাম্য ইত্যাদি ঘর ভাঙানোর জন্য অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দায়ী। ঘরের রক্ষণাবেক্ষণে পুরুষের ভূমিকাই বেশি। তবে সাংসারিক শান্তিসহ সামাজিক ভারসাম্যতা রক্ষার্থে স্ত্রীর ভূমিকাও কোনো অংশেই কম নয়। একটি বাড়ির সামনে বা পিছনের অংশে উঠান থাকতে পারে, যেখানে বাসিন্দারা আরাম করা বা খেতে পারে। ব্যুৎপত্তি ইংরেজি শব্দ হাউস প্রাচীন ইংরেজী শব্দ হাস থেকে সরাসরি আগত, যার অর্থ "বাসস্থান, আশ্রয়, ঘর, বাড়ি", যেটি প্রোটো-জার্মানি হুশান শব্দ থেকে উদ্ভূত (ব্যুৎপত্তিগত বিশ্লেষণ দ্বারা পুনর্গঠিত)। মঙ্গোলিয়ান ভাষায়ও নিজেদের ঐতিহ্যবাহী আবাসস্থলকে ঘর বলে। প্রোটো-সেমেটিক হায়ারোগ্লাইফিক প্রতীকে ঘর বোঝাতে ইংরেজি 'বি' প্রতীক ব্যবহারিত হত। প্রতীকটিকে বিভিন্ন ভাষায় "বেয়েত", "বাজি" বা "বেথ" বলা হত এবং পরবর্তীতে রোমান হরফ বিটার উৎপত্তি হয় এই প্রতীক থেকেই। আরবিতে "বেয়েত" অর্থ ঘর, এবং মাল্টিজ বেইয়েত বলতে মুলত বাড়ির ছাদকে বোঝানো হয়। উপাদানসমূহ নকশা স্থপতিরা ঘরে বসবাসকারীর চাহিদা মত করে ঘরের নকশা করে থাকেন। "ফেং শুই" মূলত বৃষ্টিপাত এবং ক্ষুদ্র জলবায়ুর মতো বিষয়গুলির উপর ভিত্তি করে বাড়িঘর সরানোর একটি চীনা পদ্ধতি, সম্প্রতি বাড়ির অভ্যন্তরের লোকদের উপর ইতিবাচক প্রভাব বাড়ানোর লক্ষ্যে অভ্যন্তরীণ জায়গাগুলির নকশার পরিধি আরও বাড়ানো হয়েছে, যদিও এর আদৌ কোন প্রভাব আছে কিনা তা প্রমাণিত নয়। ফেং শুই বলতে অনেকসময় ঘরের চারিদিক বেষ্টিত করে রাখা অথবা রিয়েল স্টেট পরিভাষায় অন্দর-বহিরাঙ্গন প্রবাহ বলা হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বাড়ির গ্যারেজ এবং অন্যান্য ব্যবহারিত স্থানগুলি বাদ দিয়ে বাকি প্রতি বর্গ ফুট স্থানগুলো "বাসযোগ্য জায়গা" হিসেবে ধরা হয়। ইউরোপীয় রীতিতে বাড়ির গ্যারেজ এবং অন্যান্য ব্যবহারিত স্থানগুলি বাদ দিয়ে ঘরের চারপাশে দেয়াল বেষ্টিত প্রতি "বর্গ মিটার" স্থানকে বাসযোগ্য জায়গা ধরা হয়।. ঘরের স্তর বা তলার সংখ্যা বৃদ্ধির সাথে সাথে স্কয়ার ফুটের তারতম্য হয়ে থাকে। প্রায়শই গৃহপালিত বা বন্য প্রাণীর জন্য মানব আবাসের সংস্করণগুলির অনুরূপ ছোট ঘর বানানো হয়ে থাকে। মানব নির্মিত প্রাণী ঘরগুলোর মধ্যে আছে, পাখির ঘর, মুরগির ঘর, কুকুরের ঘর এবং কৃষি কাজে প্রয়োজন হয় এমন পশু-পাখির জন্য আছে খামার ঘর। অংশ সমূহ অনেক বাড়িতে বিশেষায়িত সুবিধা সহ কয়েকটি বড় কক্ষ এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় বেশ কয়েকটি ছোট কক্ষ বিদ্যমান থাকে। এর মধ্যে একটি বাস / খাওয়ার কক্ষ, একটি ঘুমানোর কক্ষ এবং (যদি উপযুক্ত সুযোগসুবিধা এবং পরিবেশ বিদ্যমান থাকে) পৃথক বা সংযুক্ত ধোলাই কক্ষ এবং প্রক্ষালন কক্ষ থাকতে পারে। বেশিরভাগ প্রচলিত আধুনিক বাড়িগুলিতে কমপক্ষে একটি শয়নকক্ষ, বাথরুম, রান্নাঘর বা রান্নার জায়গা এবং একটি বসার ঘর থাকে। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে একটি বাড়ীতে যে সকল অংশ বিদ্যমান থাকে তা হলঃ কুঞ্জকুটির অলিন্দ ঘর চিলেকোঠা নিচ তলা স্নানকক্ষ শয়নকক্ষ গুদাম ঘর সংরক্ষণাগার খাবার কক্ষ পারিবারিক কক্ষ উনান হলঘর সম্মুখ কক্ষ গ্যারেজ হলওয়ে আখা পড়ার কক্ষ রান্নাঘর ভাঁড়ারঘর ধোপাখানা গ্রন্থাগার বসার ঘর মাচা বৈঠকখানা বারান্দা বিনোদন কক্ষ ইবাদাত কক্ষ সিঁড়ি ঘর সূর্যঘর সুইমিং পুল জানালা কর্মশালা ইতিহাস ঘরের প্রথম উৎপত্তি সম্পর্কে খুব কম জানা যায়, তবে এটি আশ্রয়স্থল হিসেবে সু-প্রাচীনকাল থেকে বিবেচিত হয়ে আসছে। রোমান স্থপতি ভিট্রুভিয়াসের গাছের শাখা এবং মাটির সমন্বয়ে তৈরি ঘরের কাঠামোকে প্রথম বাসযোগ্য ঘরের স্থপনা হিসেবে বিবেচিত হয়, এটি কুড়ে ঘর নামেও পরিচিত। ফিলিপ ট্যাবর এর মতে ১৭ শতকের ডাচ বাড়িগুলোই হচ্ছে আধুনিক বাড়ির ভিত্তি। মধ্য যুগ মধ্য যুগে বিভিন্ন চাহিদা অনুযায়ী ম্যানর ঘর তৈরি করা হত। ঘরগুলিতে পরিবার, আত্মীয়স্বজন, কর্মচারী, চাকরিজীবী এবং অতিথি সহ অসংখ্য লোকের বসবাস ছিল। তাদের জীবনধারা অনেকাংশেই সাম্প্রদায়িক ছিল, কারণ বড় খাওয়ার ঘরে ও সভাকক্ষে নিজস্ব রীতিনীতি অনুসরণ করা হত এবং সৌর ঘুমানোর উদ্দেশ্যে তৈরি হয়েছিল। ১৫ এবং ১৬ শতকে ইতালীয় রেনেসাঁ পালাজ্জোতে প্রচুর ঘরের অস্তিত্ব পাওয়া যায়। ম্যানর হাউসগুলির গুণাবলী এবং ব্যবহার বিচিত্রের বিপরীতে, পালাজোর বেশিরভাগ কক্ষের কোনও নির্দিষ্ট উদ্দেশ্য ছিল না, তবুও বেশ কয়েকটি দরজা লাগানো থাকত। এই দরজাগুলি সংলগ্ন কক্ষগুলি রবিন ইভান্স "পৃথক পৃথকভাবে সংযুক্ত চেম্বারের ম্যাট্রিক্স" হিসেবে বর্ণনা করেন। এই ধরনের বিন্যাস ব্যবস্থায় ভিন্ন ভিন্ন কক্ষে বসবাসকারী বাসিন্দারা অবাধে অন্যান্য কক্ষে বিচরণ করতে পারত, ফলে গোপনীয়তা রক্ষা হত না। "একবার ভিতরে প্রবেশের পরে দালান থেকে বের হতে হলে একটি ঘর থেকে অন্য ঘরে এবং এভাবে পাশের ঘর দিয়ে যাওয়ার দরকার হত। এসব অসুবিধা সত্ত্বেও নানা প্রয়োজনেড় কারণে ঘরের বাসিন্দাদের কাছে ঘরের আলাদা একটি গ্রহণযোগ্যতা সর্বদা বিদ্যমান ছিল।" ঘরের কক্ষগুলি পৃথকিকরণ এবং গোপনীয়তা রক্ষার প্রয়োজনীয়তার ফলস্বরূপ কক্ষ বর্ধনের প্রথম উদাহরণ ১৫৯৭ সালে নির্মিত লন্ডনের চেলসির বিউফর্ট হাউস। এটি ইংরেজ স্থপতি জন থর্প ডিজাইন করেছিলেন, যিনি তাঁর পরিকল্পনায় লিখেছিলেন, "সকলের মধ্যে দীর্ঘ প্রবেশ"। ঘর থেকে চলাচলে পথের এই বিচ্ছিন্নতার ফলস্বরূপ করিডোর এর কার্যকারিতার বিকাশ ঘটেছিল। সেসময় এই পদ্ধতি অত্যন্ত জনপ্রিয়তা লাভ করে, যেখানে প্রতি ঘরে আলাদা দরজা ব্যবহার করা হত এবং সকল ঘরে যাতায়াত এর জন্য দরজাগুলোর সামনে পথের ব্যবস্থা ছিল। ইংরেজ স্থপতি স্যার রজার প্র্যাট বলেছেন "বাড়ির পুরো দৈর্ঘ্যের মধ্যভাগের পথটি ঘরের অন্যান্য বাসিন্দাদের অনবরত প্রবেশ আটকিয়ে গোপনীয়তা নিশ্চিত করে"। ১৭-শতাব্দীর মধ্যে স্থপতিরা উচ্চবিত্তদের এবং তাদের অধীনস্থ চাকরদের কক্ষ আলাদা ভাবে নকশা করতে সক্ষম হয়। প্রাট এর মতে "পরবর্তীতে কর্তা ব্যাক্তিদের আরও গোপনীয়তা দেয়ার লক্ষে এমন ধরনের নকশা করা হয় যাতে সাধারণ কর্মচারীরা কখনই প্রকাশ্যে তাদের অনুষ্ঠানগুলোতে উপস্থিত হতে না পারে।" ১৯ শতকের মধ্যে এই কক্ষ বিভাজনের মাধ্যমে ধনী গরিবের মধ্যকার দূরত্ব শারীরিক ভাবেও বাড়িয়ে দেয়। সমাজবিজ্ঞানী উইটল্ড রাইব্যাকজেনস্কি লিখেছেন," দিন ও রাতের জন্য আলাদা কক্ষ এবং অভিজাত ও সাধারন এলাকা বিভাজনের প্রক্রিয়া এখান থেকে শুরু হয়।" ভিন্ন ভিন্ন ঘরের জন্য ভিন্ন প্রবেশ পথের প্রচলন ঘর গুলোকে উন্মুক্ত থেকে গোপনীয় করে তোলে। শিল্প বিপ্লব ইংল্যান্ড এবং রেনেসাঁর বৃহৎ বাড়ির তুলনায় ১৭ শতাব্দীর ডাচ বাড়িগুলো ছিল যথেষ্ট ছোট এবং চার থেকে পাঁচ জনের বসবাস উপযোগী ছিল। এটি কারণ ছিল যে তারা দাসদের উপর নির্ভরতার বিপরীতে "স্বনির্ভরতা" গ্রহণ করেছিল এবং পরিবারকেন্দ্রিক জীবনযাত্রা শুরু করেছিল। ডাচ দের কাছে পারিবারিক স্থল এবং কর্মস্থল আলাদা করা আবশ্যক ছিল যেখানে ঘর ছিল কাজের পর আরাম-আয়েশ করার জায়গা। ১৭ শতাব্দীর শেষার্ধে ঘরের নকশা কর্মস্থল মুক্ত হয়ে উঠে যা ভবিষ্যৎ গৃহনির্মাণ পদ্ধতির নতুন দ্বার উন্মোচন করে। এর ফলে শিল্প বিপ্লব উপকৃত হয় যেখানে বড় আকারের কারখানার উৎপাদন এবং অধিক শ্রমিক অর্জন করা সম্ভব হয়। ডাচদের ঘরের নকশা এবং এর কার্যকারিতা আজও পূর্বের মত বহাল আছে। উনবিংশ এবং বিংশ শতাব্দীর ঘর ১৯ এবং ২০ শতকে আমারিকান রীতিতে কিছু পেশাজীবীদের (যেমনঃ চিকিৎসক) ঘর এমন ভাবে তৈরি করা হত যেখানে ঘরের সামনের অংশ অথবা দুইটি কক্ষকে কর্মস্থল হিসেবে ব্যবহার করা হত, কক্ষগুলো মুল বাড়ি থেকে সম্পূর্ণ আলাদা থাকতো। বিংশ শতাব্দীর মাঝামাঝি সময়ে, উচ্চ প্রযুক্তির সরঞ্জামগুলির বৃদ্ধির কারণে চিকিৎসকগন স্থান পরিবর্তন করে অফিস বা হাসপাতাল থেকে কাজ পরিচালনা শুরু করেন। গৃহ অভ্যন্তরে প্রযুক্তি এবং ইলেক্ট্রনিক পন্যের ব্যবহার ঘরের গোপনীয়তা এবং ঘর থেকে কাজের বিচ্ছিন্নতাকে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে। ক্রমান্বয়ে নজরদারি এবং যোগাযোগের প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ব্যক্তিগত অভ্যাস ও ব্যক্তিগত জীবনের প্রতি প্রভাব ফেলছে। ফলস্বরূপ, "ব্যক্তিগতটি আরও জনাথন হিলের মতে "এভাবে গোপনীয়তা আরও বেশি উন্মুক্ত হয়ে পড়ছে এবং ব্যাক্তিগত জীবনযাপনের আকাঙ্খা ক্রমান্বয়ে বাড়ছে যা সামাজিকতা ধ্বংসের জ্বালানী হিসেবে কাজ করছে।" যোগাযোগ হ্রাস পেলেও, পৃথক কাজ এবং জীবনযাপনের আকাঙ্ক্ষা প্রকট হচ্ছে। অপরদিকে, কিছু স্থপতি এমন বাড়ির নকশা করেছেন যেখানে খাওয়া, কাজ এবং জীবনযাপন একত্রে করা হচ্ছে। চিত্রশালা নির্মাণ বিশ্বের অনেক জায়গায় ভেজানো উপকরণ ব্যবহার করে ঘর নির্মিত হয়। ম্যানিলার পায়েটাস এলাকার বস্তির ঘরগুলি কাছাকাছি অবস্থিত আবর্জনার স্তুপ থেকে উপাদান সংগ্রহ করে বানানো। ডাকারের বাড়িগুলো পুনর্ব্যবহারযোগ্য সামগ্রী দিয়ে তৈরি যেখানে ছাদ এবং ভিত্তি হিসেবে আবর্জনা ও বালুর মিশ্রণ ব্যবহার করা হয়। এই আবর্জনা-বালির মিশ্রণটি ঘরকে বন্যার হাত থেকে রক্ষা করে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আধুনিক বাড়ি নির্মাণের কৌশলগুলির মধ্যে হালকা ফ্রেম নির্মাণ (যেখানে কাঠের সরবরাহ আছে) এবং রামড আর্থ নির্মাণ (যেখানে কাঠ সহজলভ্য নয়) উল্লেখযোগ্য। কিছু অঞ্চলে একচেটিয়া ভাবে বাড়ির ভিত্তি হিসেবে ইট এবং খাঁজকাটা পাথর ব্যবহারিত হয়। কতক বাড়ী তৈরিতে নিয়মিত উপকরণের পরিবর্তে অ্যালুমিনিয়াম এবং লোহা ব্যবহারিত হয়। ক্রমবর্ধমান জনপ্রিয় বিকল্প নির্মাণ সামগ্রীসমূহের ভিতর উল্লেখযোগ্য হচ্ছে, অন্তরক কংক্রিট ফর্ম (কংক্রিট দিয়ে ভরা ফেনা), কাঠামোগত উত্তাপ প্যানেল, হালকা গেজ ইস্পাত এবং ইস্পাত ফ্রেমিং। প্রায়শ লোকেরা হাতের কাছে সহজলভ্য উপকরণ দিয়ে অথবা নিজস্ব সংস্কৃতির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ উপকরণ দিয়ে বাড়ি নির্মাণ করে থাকে। সুতরাং পুরো শহর, অঞ্চল, কাউন্টি বা এমনকি রাজ্য / দেশগুলি একই ধরনের উপাদান দিয়ে নির্মিত হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, আমেরিকান বাড়ি তৈরিতে একটি বড় অংশ কাঠ ব্যবহার করে, অন্যদিকে বেশিরভাগ ব্রিটিশ এবং অনেক ইউরোপীয় বাড়ি তৈরিতে পাথর, ইট বা কাদা ব্যবহার করা হয়। বিশ শতকের গোড়ার দিকে কিছু বাড়ির ডিজাইনার প্রাক-উৎপাদন ব্যবহার শুরু করেছিলেন। সিয়ার্স, রোবাক এন্ড কো ১৯০৮ সালে সর্বপ্রথম তাদের সিয়ারস ক্যাটালগ বাড়ি সাধারণ মানুষের কাছে বাজারজাত শুরু করে। ঘর নির্মাণে প্রিফ্যাব কৌশল দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে জনপ্রিয় হয়ে উঠে। এই পদ্ধতিতে প্রথমে ছোট ছোট কক্ষগুলি ফ্রেমিংয়ের পরে পুরো দেওয়াল পূনঃনির্মাণ করে নির্মাণস্থলে নিয়ে যাওয়া হয়। এ ধরনের ঘর নির্মাণের প্রধান উদ্দেশ্য ছিল দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়াতে ভালো আশ্রয়স্থলে কর্মযজ্ঞ চালিয়ে যাওয়া। অতি সম্প্রতি নির্মাতারা স্ট্রাকচারাল ইঞ্জিনিয়ারদের সাথে সহযোগিতা শুরু করেছেন যারা উচ্চ বায়ু প্রবাহ এবং ভূমিকম্প প্রতিরোধের জন্য প্রিফ্যাব্রিকেটেড ইস্পাত ফ্রেমযুক্ত বাড়ি নির্মাণের জন্য গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে। এই উদ্ভাবনের ফলে কম জনবলে অধিক মজবুত টেকসই এবং দ্রুত নির্মাণ প্রক্রিয়া সম্ভব হবে। সল্প-ব্যবহারিত নির্মাণ পদ্ধতি সাম্প্রতিক সময়ে পুনরায় জনপ্রিয়তা অর্জন করছে। যদিও ব্যাপক ব্যবহার না হলেও এই পদ্ধতিগুলো নির্মানে সক্রিয়ভাবে জড়িত মালিকদের দিনে দিনে আকৃষ্ট করছে। যেগুলো হলঃ হ্যাম্পক্রিট নির্মাণ কর্ডউড নির্মাণ জিওডেসিক ডোম স্ট্র-বেল নির্মাণ ওয়াটল এবং ডাব কাঠের ফ্রেমিং কাঠামো নির্মাণ উন্নত বিশ্বে ঘরের নকশায় শক্তি-সংরক্ষণের গুরুত্ব বেড়েছে। গৃহায়ন কার্বন নিঃসরণের একটি বড় কারণ (গবেষণায় দেখা গেছে এর হার যুক্তরাজ্যে গড়ে ৩০%)। সল্প শক্তির গৃহনির্মাণের প্রচলন দিনে দিনে বাড়ছে। আইনি সমস্যা ঐতিহাসিক গুরুত্ববহন করে এমন বাড়িগুলোতে কিছু আইনি জটিলতা রয়েছে। যুক্তরাজ্যের নতুন বাড়িগুলি ক্রয় বিক্রয় আইনের আওতায় আসে না। নতুন বাড়ি কেনার সময় ক্রেতার অন্যান্য পণ্য কেনার চেয়ে আলাদা আইনী পদ্ধতি থাকে। ইংল্যান্ডে নতুন বাড়িগুলি একটি জাতীয় হাউজ বিল্ডিং কাউন্সিল দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। সনাক্তকরণ এবং প্রতীকতা ঘনবসতি বৃদ্ধির সাথে সাথে মানুষ জমি চিহ্নিতকরন এবং খসড়া প্রণয়নের উপর গুরুত্বআরোপ করছে। কিছু বাড়ির নামকরণের সাথে বাসিন্দাদের আবেগ অনুভুতি জড়িয়ে থাকে। উদাহরণস্বরূপ, হাওয়ার্ডস এন্ডের বাড়ি বা ব্রাইডহেডের দুর্গ এর কথা বলা যেতে পারে। নিয়মতান্ত্রিক উপায়ে ঘর শনাক্ত করার জন্য বাড়ি সংখ্যা নির্ধারণের বিভিন্ন পদ্ধতি ব্যবহার করা যেতে পারে। একটি বাড়ি তার বাসিন্দা বা নির্মাতার রুচি বা অবস্থা প্রকাশ করে থাকে। সুতরাং একটি বৃহৎ এবং অভিজাত বাড়ি মালিকের সুস্পষ্ট সম্পদশালী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ করে যখন পুনর্ব্যবহারযোগ্য উপকরণগুলির দ্বারা নির্মিত একটি নিম্নমানের বাড়ি শক্তি সংরক্ষণের প্রতি সমর্থনকে ইঙ্গিত করে। ঐতিহাসিক তাৎপর্যপূর্ণ বাড়িগুলো (উদাহরণস্বরূপ বিখ্যাত ব্যাক্তিদের বাসভবন অথবা সুপ্রাচীন কোন বাড়ি) একটি এলাকার নগর পরিকল্পনায় ঐতিহ্যবাহী বাড়ি হিসেবে বিবেচিত হয়ে থাকে। এই জাতীয় বাড়ি গুলো স্মৃতি ফলক দিয়ে চিহ্নিত করে রাখা হয়। বাড়ির মালিকানা অর্থনীতিতে সমৃদ্ধির একটি সাধারণ মাপকাঠি হিসেবে বিবেচিত হয়। আরও দেখুন ভবন গৃহ নির্মাণ নির্মাণ নিবন্ধের সূচক কার্যপদ্ধতি গৃহ বিজ্ঞান মিশ্র-ব্যবহার বিকাশ দর্শনযোগ্যতা ধরন বোর্ডিং হাউস ভূ-আশ্রয় অধিবাস স্বয়ংক্রিয়তা হাউজিং এস্টেট জাপানে আবাসন হারিকেনরোধী ঘর লজিং লাস্ট্রন হাউস গ্রীষ্মকালীন ঘর ক্ষুদ্র ঘর অর্থনীতি সাশ্রয়ী মূল্যের আবাসন আবাসন সময়কাল কৃত্রিম বাড়ি বিবিধ গৃহপালিত রোবট গৃহহীন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ শতাব্দী ধরে গৃহায়ন, দ্যা অ্যাটলান্টিক ম্যাগাজিনে প্রকাশিত। গৃহায়ণ স্থাপনা গৃহ বাড়ি কাঠামো ব্যবস্থা
https://en.wikipedia.org/wiki/House
House
A house is a single-unit residential building. It may range in complexity from a rudimentary hut to a complex structure of wood, masonry, concrete or other material, outfitted with plumbing, electrical, and heating, ventilation, and air conditioning systems. Houses use a range of different roofing systems to keep precipitation such as rain from getting into the dwelling space. Houses generally have doors or locks to secure the dwelling space and protect its inhabitants and contents from burglars or other trespassers. Most conventional modern houses in Western cultures will contain one or more bedrooms and bathrooms, a kitchen or cooking area, and a living room. A house may have a separate dining room, or the eating area may be integrated into the kitchen or another room. Some large houses in North America have a recreation room. In traditional agriculture-oriented societies, domestic animals such as chickens or larger livestock (like cattle) may share part of the house with humans. The social unit that lives in a house is known as a household. Most commonly, a household is a family unit of some kind, although households may also have other social groups, such as roommates or, in a rooming house, unconnected individuals, that typically use a house as their home. Some houses only have a dwelling space for one family or similar-sized group; larger houses called townhouses or row houses may contain numerous family dwellings in the same structure. A house may be accompanied by outbuildings, such as a garage for vehicles or a shed for gardening equipment and tools. A house may have a backyard, a front yard or both, which serve as additional areas where inhabitants can relax, eat, or exercise.
1247
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%A8
মন
মন দর্শনশাস্ত্রের একটি অন্যতম কেন্দ্রীয় ধারণা। মন বলতে সাধারণভাবে বোঝায় যে, বুদ্ধি এবং বিবেকবোধের এক সমষ্টিগত রূপ যা চিন্তা, অনুভূতি, আবেগ, ইচ্ছা এবং কল্পনার মাধ্যমে প্রকাশিত হয়। মন কি এবং কীভাবে কাজ করে সে সম্পর্কে অনেক রকম তত্ত্ব প্রচলিত আছে। এসব তত্ত্ব নিয়ে চিন্তা-ভাবনা শুরু হয়েছে মূলতঃ প্লেটো, অ্যারিস্টটল এবং অন্যান্য প্রাচীন গ্রীক দার্শনিকদের সময়কাল থেকে। জড়বাদী দার্শনিকগণ মনে করেন যে, মানুষের মনের প্রবৃত্তির কোন কিছুই শরীর থেকে ভিন্ন নয়। বরং মানুষের মস্তিষ্ক থেকে উদ্ভূত শারীরবৃত্তিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে মন গড়ে উঠে। মন এর সঠিক সংজ্ঞা সম্ভব নয়। তবে এই ভাবে বলা যেতে পারে, মন হলো এমন কিছু যা নিজের অবস্থা এবং ক্রিয়াগুলি সম্পর্কে সচেতন। মনের সরুপ লক্ষণ হলো চেতনা যার থেকে মনকে জড়ো থেকে আলাদা করা হয়। মন চেতনা উপলব্ধি চিন্তা রায় ভাষা এবং মেমরি সহ জ্ঞানীয় অনুষদ একটি সেট। এটা সাধারণত একটি সত্তা এর চিন্তাভাবনা এবং চেতনা অনুষদ হিসাবে সংজ্ঞায়িত করা হয় এটি কল্পনা স্বীকৃতি এবং অনুগ্রহের ক্ষমতা ধারণ করে, এবং মনোভাব এবং কর্মের ফলে অনুভূতি ও আবেগ প্রক্রিয়াকরণের জন্য দায়ী। দর্শনের ধর্ম মনোবিজ্ঞান এবং জ্ঞানের বিজ্ঞানের একটি দীর্ঘ ঐতিহ্য আছে যা মনকে গঠন করে এবং তার বিশিষ্ট বৈশিষ্ট্যগুলি কি। মনের প্রকৃতির বিষয়ে একটি খোলা প্রশ্ন হলো মস্তিষ্কের সমস্যা যা শারীরিক মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের কাছে মনের সম্পর্কের তদন্ত করে। পুরাতন দৃষ্টিভঙ্গি দ্বৈতবাদ এবং আদর্শবাদকে অন্তর্ভুক্ত করে যা মনকে কোনভাবে অ শারীরিক বলে মনে করে। আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গিগুলি প্রায়ই শারীরিকতা এবং কার্যকারিতার কেন্দ্রবিন্দুতে থাকে যা মনে করে যে মন মস্তিষ্কের সাথে প্রায় অনুরূপ এবং স্নায়ুসংক্রান্ত ক্রিয়াকলাপ যেমন সংক্রমনের কার্যকলাপের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ।, যদিও দ্বৈতবাদ ও আদর্শবাদে অনেক সমর্থক রয়েছে। আরেকটি প্রশ্ন উদ্বেগ যে মানুষের মধ্যে কি ধরনের মন থাকতে পারে? উদাহরণস্বরূপ, মন যে সমস্ত বাস্তবসম্মত জিনিসগুলি দ্বারা কিছু বা সমস্ত প্রাণী দ্বারা মনুষ্যদের কাছে একচেটিয়াভাবে হয়, তা সবই একটি কঠোরভাবে সুনির্দিষ্ট চরিত্রগত কিনা বা মন মনুষ্য বানানো মেশিনগুলির কিছুও হতে পারে। যাই হোক না কেন এর প্রকৃতি স্বাভাবিকভাবেই সম্মত হয় যে মন এমন একটি বিষয় যার ফলে ব্যক্তিবিশেষ সচেতনতা ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে তাদের পরিবেশের দিকে নজর দেওয়া এবং কোনো ধরনের এজেন্সিগুলির সাথে উদ্দীপনাকে প্রতিক্রিয়া জানাতে এবং চিন্তা ও অনুভূতি সহ চেতনা থাকতে পারে। বিভিন্ন ধারণা বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের দ্বারা বিভিন্ন ধারণা থেকে বোঝা যায়। কিছু মানুষ মনুষ্যদের জন্য এক সম্পত্তি হিসাবে মনকে দেখতে পায় কিন্তু অন্যেরা প্রাণীদের এবং দেবতাদের কাছে নন জীবিত সত্তা (যেমন প্যান্সিসিজম এবং প্রাণিবিজ্ঞান) মনের বৈশিষ্ট্যগুলিকে সমর্পণ করে। মৃত্যুর পরে জীবন এবং জীববিজ্ঞান ও প্রাকৃতিক আদেশের উভয় তত্ত্বের সাথে জোরারদার বুদ্ধ প্লাটো অ্যারিস্টটল এবং অন্যান্য প্রাচীন গ্রীক ভারতীয় এবং পরবর্তীতে ইসলামিক মতবাদের তত্ত্বের উদাহরণ হিসাবে মনস্তাত্ত্বিক কিছু কিছু রেকর্ডকৃত ধারণাগুলি (মনুষ্য বা আত্মার সাথে একরকমভাবে বর্ণনা করা হয়েছে) মধ্যযুগীয় ইউরোপীয় দার্শনিক। মনস্তাত্ত্বিক গুরুত্বপূর্ণ দার্শনিকরা প্লাতো, ডেসকার্টস, লিবিনিজ, লক, বার্কলে, হিউম, কান্ট, হিগসেল, শোপেনহেওর, সিয়ারেল, ডেনেট, ফডর, নাগেল এবং ক্লামার্স। মনস্তাত্ত্বিক যেমন ফ্রয়েড এবং জেমস এবং কম্পিউটার বিজ্ঞানী যেমন টুরিং এবং পুঠামের মনের প্রকৃতি সম্বন্ধে প্রভাবশালী তত্ত্বগুলি গড়ে তুলেছে। অমানবিক মানসিকতার সম্ভাবনা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে উদ্ভাবিত হয় যা সাইবারনেটিক এবং তথ্য তত্ত্বের সাথে সম্পর্কযুক্ত কাজ করে যা অবহেলা মেশিনের মাধ্যমে তথ্য প্রক্রিয়াগুলি মানুষের মনের মধ্যে মানসিক চেতনার তুলনায় তুলনীয় বা ভিন্ন। মনকে চেতনা প্রবাহের মতো চিত্রিত করা হয় যেখানে অনুভূতি এবং মানসিক চেতনা ক্রমাগত পরিবর্তিত হয় মনের ধারণা সাধারণত মনকে তিনটি ভিন্ন অর্থে গ্রহণ করা হয় প্রথমত মন বলতে চিন্তা, অনুভূতি ও ইচ্ছা-এই মানসিক কাজ গুলোর সমষ্টিগত রূপ বুঝায়। দ্বিতীয়ত-মন বলতে চিন্তা, অনুভূতি ও ইচ্ছা -এই মানসিক কাজগুলি থেকে স্বতন্ত্র দেহাতিরিক্ত এক স্থান, অপরিবর্তিত আধ্যাত্ম সত্তাকে বুঝায়। তৃতীয়ত- মন বলতে বুঝায় এক মূর্ত আধ্যাত্মিক ঐক্যের সম্বন্ধ যা চিন্তা, অনুভূতি ও ইচ্ছা প্রভৃতি মানসিক প্রক্রিয়া ছাড়া কিছুই নয়, অথচ যা নিজের স্বাতন্ত্র্য না হারিয়ে এই সকল মানসিক কাজের ভিতর দিয়ে নিজেকে প্রকাশ করে। প্রথম টি হলো মন এর অভিজ্ঞতামূলক মতবাদ পরেরটা আধ্যাত্মিক-মতবাদ, শেষেরটা ভাববাদীদের মতবাদ। মন ও চেতনা মন ও চেতনা এক নয়। যদিও চেতনা হল মনের স্বরুপ লক্ষণ। মনের স্বরুপ সম্পর্কে প্রাচীন মতবাদ মনের বিষয়বস্তু মন এক আধ্যাত্মিক ধারণা। যা মানুষ শুধু কল্পনা করতে পারে যাকে স্পর্শ করা যায় না। মানুষ কাউকে উপলব্ধি করতে চাইলে মানুষ ভাবে সে মন থেকেই করছে। কোন বিষয়ের প্রতি সম্পর্কিত হতে হলে মানুষের চিন্তা-চেতনা ধ্যান- ধারণা বা সুখ-দুঃখ অনুভতির প্রয়োজন হয় যা মানুষ মন থেকে শরীরের আচরণের মাধ্যমে বহিঃপ্রকাশ ঘটায়। মানুষের বেশকিছু জৈবিক চাহিদা রয়েছে। এগুলো পূরণ করার জন্য মানুষ বিভিন্ন সম্পর্কে যায় এবং নানা ধরনের আচরণ করে থাকে। জৈবিক চাহিদাগুলোর মধ্যে রয়েছে ক্ষুধা, তৃঞ্চা, ঘুম, যৌনতা ও রেচন প্রভৃতি। এ চাহিদাগুলো যখন পূরণ হয়ে যায়, তখন মানুষ মানবিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক নানারকম কার্যাবলী সম্পাদন করে থাকে। এভাবে মানুষ কখন কেন জৈবিক আচরণগুলো করে এবং তারপর কখন কীভাবে কেন সে মানবিক এবং বুদ্ধিবৃত্তিক আচরণগুলো করা শুরু করে সেটি মানবিক পদক্ষেপ হিসেবে সুপরিচিত। মানুষের স্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য হচ্ছে, জৈবিক চাহিদাগুলো পূরণ করেই মানবিক বৈশিষ্ট্যের দিকে অগ্রসর হওয়া। সাংস্কৃৃতিক চর্চা, বৈজ্ঞানিক চর্চা, দার্শনিক চর্চা, সাহিত্য চর্চা, গল্প করা, আয়েশ করা প্রভৃতি মানবিক পদক্ষেপজনিত আচরণ। এ সব কার্যক্রমের মাধ্যমে প্রেমপ্রীতি, স্নেহ, ভালোবাসা, মমতা ও প্রশান্তি, প্রভৃতি ধনাত্মক বিষয়গুলো বিকশিত হয় এবং ক্রোধ, হিংসা প্রভৃতি ঋণাত্মক বিষয়গুলো দূরীভূত হয়। তবে জৈবিক চাহিদা পূরণ না হলে মানুষ মানবিক চাহিদা পূরণ করার জন্য অগ্রসর হতে চায় না। যেমন, যেখানে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ব্যাপকভাবে রয়েছে সেখানে সঙ্গীত চর্চা, বিজ্ঞান চর্চা প্রভৃতি সুষ্ঠুভাবে চলতে পারে না। মনের বৈজ্ঞানিক ধারণা মনের দর্শনশাস্ত্র খ্রিস্টপূর্বকালীন সময় থেকেই দার্শনিকেরা মনের চারিত্র্য নিয়ে মাথা ঘামিয়েছেন। মানব মন এবং দেহের যে সম্পর্ক তা নিয়ে বিভিন্ন যুগে বিভিন্ন দেশের দার্শনিকরা ভাবিত হয়েছেন এবং তাদের মত প্রকাশ করেছেন। দার্শনিকদের চিন্তাবলী দুটি স্রোতে বিভক্ত: এক দিকে মন এবং দেহ পৃথক এই দ্বৈততা এবং বিপরীতে মন এবং দেহ অভিন্ন এই একসূত্রিতা। মনের রোগ মনের রোগ হলো সেই সমস্ত রোগ যেগুলোর অস্তিত্ব কেবল মনে অর্থাৎ শরীরে কোনো রোগ নাই কিন্তু মন খারাপ বা মনের মধ্যে দুঃখ-বেদনা, অশান্তি-হতাশা ইত্যাদির কারণে মানসিকভাবে সুস্থ নয় ফলে শরীরের উপরও তার প্রভাব পড়ে। মনের রোগ হলে মানুষ মানসিক সমস্যায় ভোগে। এক্ষেত্রে তাকে মানসিক চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হয়। সনাতন ধর্মীয় শাস্ত্রে মন.... মন হল - মানুষের ভাবনাচিন্তা, যার নিয়ন্ত্রন মানুষের মধ্যে না থাকলে মানুষ অস্থিরতায় ভোগে এবং জীবনের সঠিক লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারে না। শ্রীকৃষ্ণ ভগবদগীতা তে বলেছেন - দেহের থেকে 'বুদ্ধি' বড়, বুদ্ধির থেকে 'মন' বড় এবং মন থেকে 'আত্মা' বড়... তুমি আত্মায় স্থির হও, তবেই নিজের লক্ষ্য অর্জন সম্ভব। আত্মা বলতে - ইচ্ছাশক্তি কে নির্দিষ্ট করে, যা পরমাত্মার থেকে উৎস। পশু-পাখির ক্ষেত্রে মন আরও দেখুন চিন্তা সংজ্ঞানাত্মক বিজ্ঞান চেতনা বিবেক মনের দর্শন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ C. D. Broad, The Mind and Its Place in Nature, 1925. ThinkQuest: Think.com, Oracle Education Foundation, Projects | Competition | Library , History of Artificial Intelligence. Loebner.net , Description by Turing of testing machines for intelligence. মনস্তত্ত্ব দর্শন দর্শনের ইতিহাস শিক্ষার ইতিহাস অধিবিদ্যার ধারণা দার্শনিক ধারণা জ্ঞানতাত্ত্বিক মতবাদ মূল বিষয়ের নিবন্ধ অভিজ্ঞতা-নিরপেক্ষ বিজ্ঞানের দর্শনের ধারণা অধিদর্শনের ধারণা মন মস্তিষ্ক সংজ্ঞানাত্মক বিজ্ঞান মনের দর্শনের ধারণা
https://en.wikipedia.org/wiki/Mind
Mind
The mind is what thinks, feels, perceives, imagines, remembers, and wills, encompassing the totality of mental phenomena. It includes both conscious processes, through which an individual is aware of external and internal circumstances, and unconscious processes, which can influence an individual without intention or awareness. Traditionally, minds were often conceived as separate entities that can exist on their own but are more commonly understood as features or capacities of other entities in the contemporary discourse. The mind plays a central role in most aspects of human life but its exact nature is disputed; some theorists suggest that all mental phenomena are private and directly knowable, transform information, have the ability to refer to and represent other entities, or are dispositions to engage in behavior. The mind–body problem is the challenge of explaining the relation between matter and mind. The dominant position today is physicalism, which says that everything is material, meaning that minds are certain aspects or features of some material objects. The evolutionary history of the mind is tied to the development of the nervous system, which led to the formation of brains. As brains became more complex, the number and capacity of mental functions increased with particular brain areas dedicated to specific mental functions. Individual human minds also develop as they learn from experience and pass through psychological stages in the process of aging. Some people are affected by mental disorders, for which certain mental capacities do not function as they should. It is widely accepted that animals have some form of mind, but it is controversial to which animals this applies. The topic of artificial minds poses similar challenges, with theorists discussing the possibility and consequences of creating them using computers. The main fields of inquiry studying the mind include psychology, neuroscience, cognitive science, and philosophy. They tend to focus on different aspects of the mind and employ different methods of investigation, ranging from empirical observation and neuroimaging to conceptual analysis and thought experiments. The mind is relevant to many other fields, including epistemology, anthropology, religion, and education.
1252
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%98%E0%A6%B0
জাদুঘর
জাদুঘর বা সংগ্রহালয় বলতে বোঝায় এমন একটি ভবন বা প্রতিষ্ঠান যেখানে পুরাতাত্ত্বিক নিদর্শনসমূহের সংগ্রহ সংরক্ষিত থাকে। জাদুঘরে বৈজ্ঞানিক, শৈল্পিক ও ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বস্তুসমূহ সংগ্রহ করে সংরক্ষিত করা হয় এবং সেগুলি প্রদর্শ আধার বা ডিসপ্লে কেসের মধ্যে রেখে স্থায়ী অথবা অস্থায়ীভাবে জনসাধারণের সমক্ষে প্রদর্শন করা হয়। বিশ্বের অধিকাংশ বড় জাদুঘরই প্রধান প্রধান শহরগুলিতে অবস্থিত। অবশ্য ছোটো শহর, মফস্বল ও গ্রামাঞ্চলেও স্থানীয় জাদুঘর গড়ে উঠতে দেখা যায়। অতীতকালে জাদুঘরগুলি গড়ে উঠত ধনী ব্যক্তিদের ব্যক্তিগত বা পারিবারিক উদ্যোগে অথবা কোনো প্রাতিষ্ঠানিক উদ্যোগে। এই সব জাদুঘরে সংরক্ষিত থাকত শিল্পকর্ম, দুষ্প্রাপ্য ও আশ্চর্যজনক প্রাকৃতিক বস্তু বা পুরাবস্ত। সারা বিশ্বেই জাদুঘর দেখা যায়। প্রাচীনকালে গড়ে ওঠা আলেকজান্দ্রিয়ার জাদুঘর ছিল আধুনিককালের স্নাতক প্রতিষ্ঠানগুলির সমরূপ। ব্যুৎপত্তি বিশিষ্ট অভিধানকার জ্ঞানেন্দ্রমোহন দাশের মতে, বাংলায় "জাদুঘর" কথাটি আরবি "আজায়ব্ [ঘর/খানা]" শব্দটির সঙ্গে তুলনীয়। বাংলায় "জাদুঘর" কথাটির অর্থ হল, "যে গৃহে অদ্ভুত অদ্ভুত পদার্থসমূহের সংগ্রহ আছে এবং যা দেখিয়া মন্ত্রমুগ্ধবৎ হ’তে হয়।" আকাদেমি বিদ্যার্থী বাংলা অভিধান মতে, "জাদুঘর" শব্দের অর্থ, "যে-ঘরে নানা অত্যাশ্চর্য জিনিস বা প্রাচীন জিনিস সংরক্ষিত থাকে।" ইংরেজি "museum" ("মিউজিয়াম") শব্দটি এসেছে লাতিন শব্দ থেকে। ইংরেজি বহুবচনে এই শব্দের রূপটি হল "museums" (বা অপ্রচলিত শব্দ, "musea")। শব্দটির মূল উৎস গ্রিক শব্দ Μουσεῖον (Mouseion); যার অর্থ গ্রিক পুরাণের শিল্পকলার পৃষ্ঠপোষক মিউজদের মন্দির। প্রাচীন গ্রিসে এই জাতীয় মন্দিরগুলিকে কেন্দ্র করে পাঠাগার ও শিল্প পুরাকীর্তির সংগ্রহশালাও গড়ে উঠতে দেখা যেত। ২৮০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দে আলেকজান্দ্রিয়ায় টলেমি প্রথম সোটার প্রতিষ্ঠিত দর্শন মিউজিয়াম (প্রতিষ্ঠান) ছিল এই জাতীয় একটি জাদুঘর। অ্যাথেন্সে প্লেটো প্রথম একটি মিউজিয়াম গ্রন্থাগার গড়ে তুলেছিলেন। যদিও পসেনিয়াসের রচনায় অন্য একটি স্থানকে "মিউজিয়াম" বলে অভিহিত করা হয়েছে। এটি হল ধ্রুপদি অ্যাথেন্সে অ্যাক্রোপোলিশের বিপরীত দিকে অবস্থিত একটি ছোটো পাহাড়। কথিত আছে, মউসিয়াস নামে এক ব্যক্তি এই পাহাড়ে বসে গান গাইতেন। বৃদ্ধ বয়সে তিনি সেখানেই মারা যান এবং সেই পাহাড়েই তাকে সমাধিস্থ করা হয়। তার নামানুসারে পাহাড়টির নামকরণ হয়েছিল "মউসিয়ন" ("Mouseion")। আরও দেখুন মাদাম তুসো জাদুঘর মাদারীপুর মিউজিয়াম পাদটীকা অতিরিক্ত পঠন বহিঃসংযোগ International Council of Museums (ICOM) VLmp directory of museums (VLmp) জাদুঘর জাদুঘর শিক্ষা
https://en.wikipedia.org/wiki/Museum
Museum
A museum is an institution dedicated to displaying and/or preserving culturally or scientifically significant objects. Many museums have exhibitions of these objects on public display, and some have private collections that are used by researchers and specialists. Museums host a much wider range of objects than a library, and usually focus on a specific theme, such as the arts, science, natural history or local history. Public museums that host exhibitions and interactive demonstrations are often tourist attractions, and many attract large numbers of visitors from outside their host country, with the most visited museums in the world attracting millions of visitors annually. Since the establishment of the earliest known museum in ancient times, museums have been associated with academia and the preservation of rare items. Museums originated as private collections of interesting items, and not until much later did the emphasis on educating the public take root.
1255
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A8%E0%A6%A4%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AC
প্রত্নতত্ত্ব
বাংলা প্রত্নতত্ত্ব শব্দটি 'প্র+ত্ন= প্রত্ন' অর্থ- পুরাতন ও 'তৎ+ত্ব= তত্ত্ব'অর্থ-বিজ্ঞান। সমষ্টিগত অর্থ হল, পুরাতন বিষয়ক জ্ঞান। প্রচলিত ধারণায়, বস্তুগত নিদর্শনের ভিত্তিতে অতীত পুনঃনির্মাণ করার বিজ্ঞানকেই প্রত্নতত্ত্ব বলে চিহ্নিত করা হয়। অতীতের সংস্কৃতি ও পরিবেশগত নিয়ে চর্চা করে এমন অন্যান্য বিজ্ঞান বা বিষয়গুলোর (যেমন- ভূতত্ত্ব, পরিবেশ বিজ্ঞান, ভূগোল, ইতিহাস, মনোবিজ্ঞান, দর্শন, ধর্মতত্ত্ব ইত্যাদি) মধ্যে প্রত্নতত্ত্বের বিশেষত্ব হলো- এটি কেবল বস্তুগত নিদর্শন অর্থাৎ প্রামাণ্য তথ্য নিয়ে কাজ করে এবং তার সাথে মানুষের জীবনধারার সম্পর্ক নির্ণয় করে। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়- ভূতাত্ত্বিক ও পরিবেশ বিজ্ঞানীরা প্রাচীন ভূমিরূপ ও অন্যান্য পরিবেশগত তথ্য বিশ্লেষণ করে ইনামগাঁওয়ের কয়েকহাজার বছরের বৃষ্টিপাতের ধরনের একটি উপাত্ত হাজির করেছেন। প্রত্নতাত্ত্বিকরা প্রাচীন ভূমিরূপ ও অন্যান্য পরিবেশগত তথ্য উদ্ধারের এই প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত থাকলেও ওই বিশেষ বৃষ্টিপাতের পরিস্থিতিতে মানুষ কীভাবে বসবাস ও জীবনযাপন, এই বিশেষ বিশ্লেষণটি প্রত্নতাত্ত্বিকরা করে থাকেন। ইনামগাওয়ের পরিবৈশিক তথ্য ও গর্তবসতিগুলো এই দুই প্রাচীন উপাদান মিলিয়ে প্রত্নতাত্ত্বিকরা সেই সময়ের মানুষের জীবনপ্রণালি বিশ্লেষণ করতে চেষ্টা করেন। তাই প্রত্নতত্ত্বের অধ্যয়নের মূল বিষয়গুলো হলো- ভৌত ধ্বংসাবশেষ, পরিবেশগত তথ্য, জৈব অবশেষ বা জীবাশ্ম, প্রাকৃতিক-সাংস্কৃতিক ভূদৃশ্যাবলী ইত্যাদি। আর প্রত্নতত্ত্বের কাজ হলো- এইসব বিষয়কে বিশ্লেষণ করে প্রাচীনকালের মানুষ এবং পরিবেশ ও প্রকৃতির তৎকালীন চিত্র বোঝা এবং তার মাধ্যমে মানুষ এবং পরিবেশ ও প্রকৃতির পরিবর্তনের ধারা ব্যাখ্যার মাধ্যমে ভবিষ্যতের মানুষ এবং পরিবেশের রূপরেখা নির্মাণ করা। এর ফলে প্রত্নতত্ত্ব প্রধানত ইতিহাস ও পরিবেশ বিজ্ঞানের এক সহযোগী। তবে পরিবৈশিক প্রেক্ষিতের চেয়ে মানুষের সংস্কৃতির সাথে সরাসরি সম্পর্কিত এমন বিষয়েই দীর্ঘকাল ধরে প্রত্নতাত্ত্বিক কর্মকাণ্ড সীমিত ছিল। কাজেই সাধারণত প্রত্নস্থান ও পুরাতন জিনিসপত্র আবিষ্কার, স্থান ও বস্তু চিহ্নিতকরণ ও নথিভুক্তকরণ এবং বস্তু ও কাঠামোর বিজ্ঞানসম্মত সংরক্ষণ ও তা জনসমক্ষে উপস্থাপন এর মধ্যেই প্রত্নতাত্ত্বিক চর্চা সীমাবদ্ধ ছিল। প্রাকৃতিক ও পরিবৈশিক প্রেক্ষিত এবং অবস্তুগত ভাবগত নিদর্শন যেমন সামাজিক সম্পর্ক ও মনোস্তাত্ত্বিক বিশ্লেষণ বর্তমানে প্রত্নতত্ত্বে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে। এর ফলে প্রত্নতত্ত্ব বর্তমানে মানুষের অতীত ইতিহাসের গৃহবন্দী চর্চার বদলে পরিবেশ, ভূপ্রকৃতি এবং উদ্ভিদ ও প্রাণীজগতের অন্যান্য বিষয়ের অতীত অধ্যয়নের মধ্য দিয়ে ভবিষ্যত নির্মাণের বিজ্ঞান হিসেবে চর্চিত হচ্ছে। উদ্ভব ও বিকাশ খ্রিষ্টপূর্ব ৫৫৬-খ্রিষ্টপূর্ব ৫৩৯ অব্দে বেবিলনের সিপপুরে সামাথ নামক একটি ধ্বংসপ্রাপ্ত মন্দিরের নির্মাতার নাম জানার উদ্দেশ্যে সম্রাট নবনিডাস (Nabonidus) ধ্বংসস্তুপের মধ্যে খননকাজ পরিচালনা করেন। তার এই কীর্তির জন্য তাকে পৃথিবীর প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক বলে অভিহিত করা হয়। সম্রাটের কন্যা এন্নিগালডি নান্না (Ennigaldi Nanna) খননে প্রাপ্ত এবং পার্শ্ববর্তী এলাকা থেকে সংগৃহীত নিদর্শনাদি প্রদর্শনের ব্যবস্থা করেন। গ্রিক ঐতিহাসিক থুকিডাইডেস (Thucydides)-এর বর্ণনা থেকে জানা যায়, খ্রিষ্টপূর্ব ৪৬০- খ্রিষ্টপূর্ব ৩৮৬ অব্দে এথেন্সের প্রত্নতাত্ত্বিকরা দেলস (Delos)-এর ঈজিয়ান দ্বীপের (Aegean Islands) প্রাচীন সমাধিগুলোতে খনন পরিচালনা করে খননে প্রাপ্ত নিদর্শনাদি সম্পর্কে সেই সময়ের রাজনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষিতে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা করেছেন। অন্য দিকে, প্রাচীন চীনে পূর্ব-প্রজন্মের নিদর্শনাদি সংরক্ষণের মাধ্যমে পারিবারিক ও মৌখিকভাবে হাজার বছরের প্রাচীন ইতিহাস সংরক্ষণের প্রচলন ছিল। রোমান দার্শনিক লুকরেটিয়াস (Lucretius) খ্রিষ্টপূর্ব ৯৯-খ্রিষ্টপূর্ব ৫৫ অব্দে এবং চীনা দার্শনিক ইউয়ান কং (Yuan K'ang) খ্রিস্টীয় প্রথম শতাব্দীতে চীনাদের প্রত্ননিদর্শন সংরক্ষণের এই চর্চা এবং এই নিদর্শনগুলোর বিশ্লষেণ করে প্রাচীন চীনা সংস্কৃতির রূপরেখা উপস্থাপনের চেষ্টা করেছেন। ভারতে সুলতানী শাসনামলে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহ ও এর ভিত্তিতে ইতিহাস চর্চার সূচনা হয়। মুহম্মদ বিন তুঘলক (১৩২৪-১৩৫১) ব্যাপক প্রত্নতাত্ত্বিক অনুশীলন করেন। তিনি সারা ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে অসংখ্য প্রাচীন নিদর্শন সংগ্রহ করেন এবং এগুলোর আলোকে ইতিহাস রচনার জন্য পেশাদার প্রত্নতাত্ত্বিক নিয়োগ করেন। অশোকস্তম্ভসমূহের শিলালিপির পাঠোদ্ধারের জন্য তার ঐকান্তিক প্রচেষ্টা পৃথিবীর প্রথম পেশাদারী প্রত্নতাত্ত্বিক চর্চার গুরুত্বপূর্ণ উদাহরণ। চতুদর্শ শতক থেকে ইউরোপের রেনেসাঁ পর্বে অভিজাতদের মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন সংগ্রহের প্রবণতা বৃদ্ধি পায়; ফলে প্রত্নতাত্ত্বিক ও প্রত্ন-লুটেরা উভয় সম্প্রদায় মূলত যেকোনো উপায়ে প্রত্ন নিদর্শন সংগ্রহ করার জন্য উৎসাহী হয়ে ওঠেন। মিশরের পিরামিড ও ইউরোপের প্রাচীন সমাধিগুলোতে প্রত্নতত্ত্ব চর্চার নামে এক ধ্বংসযজ্ঞ পরিচালনা করা হয়। ইতালিতে (রোম) যাচ্ছেতাই খনন এবং নিদর্শন বাণিজ্য এতো জনপ্রিয় হয়ে ওঠে যে, সেখানে বেশকিছু প্রত্ননিদর্শন বিক্রির বাজার ও বার্ষিক প্রত্ননিদর্শন বিক্রয় মেলা আয়োজন করা হতো। এই প্রথায় প্রথম বিপরীতমুখী প্রয়াস চালান ইংরেজ গবেষক জন লিল্যান্ড (John Leland)। ১৫৩৩ থেকে ১৫৪৭ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত তিনি প্রাচীন নথিপত্র সংগ্রহ, সংরক্ষণ ও গবেষণায় নিয়োজিত থাকেন। অপর ইংরেজ গবেষক উইলিয়াম কার্ডেন (William Carden) ১৫৮৬ খ্রিষ্টাব্দ থেকে ইংল্যান্ডের প্রাচীন নিদর্শনসমূহের এক বিস্তারিত তালিকা প্রণয়ন করেন যা "ব্রিটানিয়া" নামে প্রকাশিত হয়। তার গবেষণাকর্মটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, কেননা, তিনি স্থানিক প্রেক্ষিতের সাথে সঙ্গতি রেখে প্রাচীন নিদর্শনগুলোর ব্যাখ্যা করেন এবং উদ্ভিদের দেহবৃদ্ধির ধরনের পার্থক্যের ভিত্তিতে মাটির নিচে চাপা পড়া প্রত্নস্থান শনাক্তকরণের পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। প্রত্নস্থান চিহ্নিতকরণ ও বিশ্লেষণের এই এরিয়াল পদ্ধতি (প্রাযুক্তিক উৎকর্ষের কারণে বিবর্তিত হলেও) আজো অত্যন্ত জনপ্রিয়। অপর ইংরেজ প্রত্নতাত্ত্বিক জন অব্রে (John Aubrey) Stonehenge ও Abebury নামে দুটি প্রত্নস্থানের বিশদ বিবরণ ও বিশ্লেষণ করেন। তার বিবরণের ওপর নির্ভর করে ১৭০৯ খ্রিষ্টাব্দে হারকুল্যুনেউম ও পম্পেই অঞ্চলে সুনির্দিষ্ট বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে প্রথম প্রত্নতাত্ত্বিক খনন পরিচালিত হয়। ১৭৬৫ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত এখানে একটানা খনন পরিচালিত হয়, এবং প্রাপ্ত নিদর্শনসমূহের অদ্ভুত ধাঁধায় খনন পরিত্যাক্ত হয় এবং তা থেকে কোনো ইতিহাস ব্যাখ্যা করা সম্ভব হয়নি। পরবর্তীতে ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে খনন আবার শুরু হয়, এখনো সেখানে খনন চলছে। ১৮১৮ খ্রিষ্টাব্দে ডেনিশ প্রত্নতাত্ত্বিক ও কিউরেটর সি জে থমসন "থ্রি এজ সিস্টেম" আবিষ্কার করলে ইতিহাসের অনেক অমীমাংসিত প্রশ্নের উত্তর দেওয়া সহজ হয়ে ওঠে। ফলে প্রত্নতত্ত্ব চর্চা এক নতুন গতি পায়। তিনি পৃথিবীর ইতিহাসকে পাথর যুগ, ব্রোঞ্জের যুগ ও লোহার যুগ - এই তিনটি ভাগে ভাগ করলে, পাথরের হাতিয়ার ও ব্রোঞ্জের হাতিয়ারগুলো আসলে কী তা বোঝা সম্ভব হয়, এবং ধর্মগ্রন্থ অনুযায়ী ব্যাখ্যা প্রদানের হাত থেকে প্রত্নতত্ত্ব রক্ষা পায়। অপর ডেনিশ প্রত্নতাত্ত্বিক জে জে ওয়ারসাই ১৮৩৬ খ্রিষ্টাব্দে এই গবেষণাকে একটি একক প্রত্নস্থানের স্তরবিন্যাসের মাধ্যমে প্রমাণ করতে সক্ষম হন। একটি প্রত্নস্থানের বিভিন্ন গভীরতায় বিভিন্ন ধরনের প্রত্নসামগ্রী যে একই সময়ের ব্যক্তিরা ব্যবহার করেনি, তা যে মানুষের ইতিহাসের বিকাশের ও পরিবর্তনের ধারাবাহিকতা এই তথ্য প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণায় এক অভাবনীয় গতি দেয়। ১৮৬০ খ্রিষ্টাব্দে ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে পম্পেই ও হারকুল্যুনেউম-এ প্রত্নতাত্ত্বিক খনন শুরু হয় এবং এইবার প্রত্নতাত্ত্বিকরা উক্ত প্রত্নস্থলের মানুষের জীবনপ্রণালি ব্যাখ্যায় অগ্রগতি লাভ করেন। এই সাফল্য দেশ-বিদেশের প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে প্রত্নতাত্ত্বিক খননের এক উৎসবের সূচনা করে। কার্টিয়াস গ্রিসের অলিম্পিয়ায়, কোল্ডওয়ে এবং ওয়াল্টার মেসোপটেমিয়ায়, হার্বাট কনসট্যান্টিন্যাপল ও তুরস্কের বিভিন্ন জায়গায়, পিট রিভার্স ইংল্যান্ডে এবং হুইলার ভারতে প্রত্নতাত্ত্বিক খনন সূচনা করেন। এই প্রত্যেকটি খনন পৃথিবীর ইতিহাসে নতুন অধ্যায় যুক্ত করতে সক্ষম হয়েছে। আধুনিক প্রত্নতত্ত্ব আধুনিক প্রত্নতত্ত্ব চর্চা শুরু হয় জার্মানদের হাতে। জার্মান মানবতাবাদী ও প্রাক-ইতিহাসবেত্তা (প্রিহিস্টোরিয়ান) গুস্তাফ কোসিনা ১৮৯৫ হতে ১৯৩১ খ্রিষ্টাব্দ পর্যন্ত মৃত্যুর আগ পর্যন্ত "বসতি প্রত্নতত্ত্ব" (সেটেলমেন্ট প্রত্নতত্ত্ব) নামে প্রত্নতত্ত্বের এক আধুনিক মতবাদের বিকাশ ঘটান। এর মূল ভিত্তি ছিল, বস্তুনিদর্শনের (আর্টিফ্যাক্ট) ধরনের মাধ্যমে মানব সংস্কৃতি নির্ণয় এবং স্বতন্ত্র সাংস্কৃতিক অঞ্চলকে প্রাচীন ট্রাইব বা এথনিক গ্রুপের বসতি এলাকা বলে চিহ্নিত করা। তার পদ্ধতির সবচে সমস্যাযুক্ত বিষয় হলো বর্তমান মানুষের সংস্কৃতির সঙ্গে অতীত সংস্কৃতির ধারাবাহিকতাকে সরাসরি বর্ণনা করা। এর মাধ্যমে তিনি বর্তমান জার্মানদেরকেই নর্ডিক, আর্য বা ইন্দো-ইউরোপীয় (ইন্দো-জার্মান)-দের উত্তরাধিকার ঘোষণা করেন। তিনি অন্য সংস্কৃতি ও মানুষদের ওপরে জার্মানদের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করেন। প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জার্মানদের পরাজয়ের পর তিনি প্রত্নতাত্ত্বিক গবেষণার মাধ্যমে যুক্তি করতে থাকেন, লৌহ যুগে পোল্যান্ড জার্মানদের বসতির একটি অংশ ছিল। কোসিনার মৃত্যুর পর জাতীয় সমাজতান্ত্রিকদের উদ্ভব হলে তারাও তার এই ডগমা গ্রহণ করে। থার্ড রাইখের সময় (হিটলারের নাজী শাসনামলকে থার্ড রাইখ বলা হয়) এই মতবাদ পৃষ্ঠপোষকতা পায়। নাজী শাসনে এটি প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতা পায়। আলফ্রেড রোজেনবার্গ এবং হাইনরিখ হিমলার এই মতবাদ বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণের চেষ্টা করেন। এডলফ হিটলার এদের উভয়কে সরাসরি সাহায্য করেন। হিমলার গড়ে তোলেন Deutsches Ahnenerbe (জার্মান বংশগতির উত্তরাধিকার) নামক একটি সংস্থা। এরা কোসিনার বসতি প্রত্নতত্ত্বের বাধ্যতামূলক ব্যবহার করে (Jones ১৯৯৮:৩)। তারা জার্মানীর পূর্বদিকে বিস্তার আবিষ্কার করে। এই বিস্তার ছিল পোল্যান্ড, দক্ষিণ রাশিয়া এবং ককেশাস অঞ্চলে। প্রত্নতত্ত্বের এই ধারার সঙ্গে আরও যারা এই দলে যুক্ত ছিলেন তাদের মধ্যে হ্যান্স রাইনার্থ ও হারমান উইর্থের নাম উল্লেখযোগ্য। ইউরোপ বা বৈশ্বিকভাবে ব্যাপারটি যেমন-ই হোক না কেন, এই গবেষণা জার্মানদের জাতীয় চেতনা ও অহমবোধ বিকাশে যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ ছিল। অন্যদিকে, পোলিশ প্রত্নতাত্ত্বিক Konrad Jazdewski ১৯৪৯ খ্রিষ্টাব্দে ইউরোপের প্রত্নতাত্ত্বিক অ্যাটলাস প্রকাশ করেন, তাতে তিনি ব্রোঞ্জ যুগে মধ্য ও পূর্ব ইউরোপে স্লোবানিক জাতির সম্প্রসারনকে চিত্রিত করেন (Kristiansen ১৯৯২:১৮), অর্থাৎ এক অর্থে তিনি পোলিশ (স্লোবানিক)-দেরকেই ইউরোপের প্রকৃত মালিক হিসেবে উপস্থাপন করেন; এটি পোলিশদের আত্মশ্লাঘার একটি হাতিয়ার হিসেবে আজো ক্রিয়াশীল। একই ভাবে ফ্রান্সে রোমান সাম্রাজ্যের সম্প্রসারণ প্রতিহতকরণে গলদের প্রতিরোধের প্রত্নতাত্ত্বিক নথিগুলো ফরাসি জাতীয় চেতনা বিকাশে কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে। আয়ারল্যান্ডের জাতীয় চেতনার বিকাশ ঘটেছে লা টেনে-র ওপরে প্রত্নতত্ত্বের গবেষণালব্ধ তথ্যগুলো প্রকাশিত হওয়ার পর। যদিও জার্মানদের মতো এখানেও তা একটি রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের কারণ ঘটায়, কিন্তু আইরিশ জাতীয় প্রেরণার এক উৎস হিসেবেই থেকে যায়। একই ভাবে ইসরাইলের মাসাদা অঞ্চলে প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখননের পর দেখা যায়- সেখানে রোমান সাম্রাজ্যের বিরোধিতাকারী একদল ইহুদি গণ-আত্মহত্যা করেছিল; এই ঘটনা এবং স্থানটি ইসরাইল রাষ্ট্রটির জাতীয় চেতনার প্রতীক হিসেবে তৈরি হয়েছে, স্থানটি সামরিক অনুষ্ঠানাদির কেন্দ্র হিসেবেও গড়ে উঠেছে (Zarubavel ১৯৯৪)। প্রত্নতত্ত্বের এই ধারার বিকাশ উত্তর আফ্রিকা এবং ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম গড়ে তুলতে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে (Mattingly ১৯৯৬:৫৬-৯ এবং Paddayya ১৯৯৫:১৪১)। সাম্প্রতিক সময়ে অযোধ্যার বাবরি মসজিদ-রামমন্দির বিতর্কেও এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রূপে ব্যবহৃত হয়েছে (Rao ১৯৯৪, Pollock ১৯৯৬)। বসতি প্রত্নতত্ত্বের পর প্রত্নতত্ত্বের যে মতবাদটি সবচেয়ে বেশি প্রভাব-বিস্তারী ছিল তা হলো সংস্কৃতি-ঐতিহাসিক প্রত্নতত্ত্ব। গর্ডন চাইল্ড এই মতবাদের প্রধান উদ্যোক্তা। প্রত্নতত্ত্ব চর্চায় তার ব্যাপক অবদানের জন্য অনেকে তাকে প্রত্নতত্ত্বের জনক-ও বলে থাকেন। যেসব বিষয় সাধারণভাবে সংস্কৃতির অংশ বলে গণ্য হয় এবং প্রায়ই যা প্রাচীন সামাজিক সত্তার বিভিন্ন খণ্ডাংশের ফল হিসেবে গণ্য হয় তার এককের স্থানিক ও সময়গত কাঠামোর মধ্যে তৈরি বস্তুগত নিদর্শনের অভিজ্ঞতাবাদী সারসংক্ষেপ, বর্ণনা এবং শ্রেণীকরণের (ক্লাসিফিকেশন) বৈশিষ্ট্যকেই সংস্কৃতি-ইতিহাস বলা যেতে পারে। সংস্কৃতি-ঐতিহাসিক প্রত্নতত্ত্বের বিভিন্ন আঞ্চলিক ও জাতীয় ঐতিহ্যের ভিন্নতা (বা বৈচিত্র্য) সত্ত্বেও এটাই ছিল বিশ শতকের ইউরোপ ও পৃথিবীর অন্যত্র প্রধান প্রত্নতাত্ত্বিক মতবাদ। এই পদ্ধতি অনুসরণ করে অতীত জনগণ বা জাতিগোষ্ঠীর সাংস্কৃতিক ইতিহাস তৈরি করা হয়, যা আসলে নাজি জার্মানীর প্রত্নতাত্ত্বিক কাঠামোর মূলনীতির সঙ্গে একই। জাপানের ঐতিহ্যবাহী কৃষি ও কৃষিনির্ভর সংস্কৃতির প্রতি জাতীয় গুরুত্ব আরোপ এবং অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসীদের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠায় প্রত্নতত্ত্বের এই ঘরানার গবেষণাগুলো অত্যন্ত প্রভাব বিস্তার করে। ১৯৭৮ খ্রিষ্টাব্দে যুক্তরাষ্ট্রের অ্যারিজোনায় তাসকান শহরে ড. উইলিয়াম রাথজে পরিচালিত ফেলনাময়লা প্রকল্প (The Garbage Project) আধুনিক প্রত্নতত্ত্বের এক মাইলস্টোন। শহরের অধিবাসীদের ফেলে দেওয়া ময়লা-আবর্জনা থেকে শহরের মানুষের স্বভাব-চরিত্র-সংস্কৃতি বিশ্লেষণ করে তিনি প্রাচীন নিদর্শন থেকেও যে প্রাচীন মানুষের সংস্কৃতি ব্যাখ্যা করা সম্ভব তা প্রমাণ করেন। এর ফলে প্রত্নতত্ত্ব শুধু বিজ্ঞানকে হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, তা-ই নয়, বরং পদ্ধতি হিসেবেও প্রত্নতত্ত্ব যে বৈজ্ঞানিক তা প্রমাণিত হয়। এই গবেষণা প্রকাশিত হওয়ার পর বিভিন্ন দেশে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরে প্রত্নতাত্ত্বিক পদ্ধতিতে তথ্য আহরণ করা শুরু হয় এবং বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে প্রত্নতত্ত্ব জনপ্রিয় বিষয় হিসেবে চালু করা হয়। এর ফলে আশির দশক থেকে বিশ্বব্যাপী প্রত্নতত্ত্ব চর্চা ব্যাপক বৃদ্ধি পেলে এর মতাদর্শিক ঘরানারও ব্যাপক বিস্তার ঘটে। কাঠামোবাদী, প্রক্রিয়াবাদী, উত্তর-প্রক্রিয়াবাদী, নির্মাণবাদী ইত্যাদি নানা ঘরানা দ্রুত প্রকাশিত হয়। আপাত অর্থে বিভিন্ন ছোট ছোট ইস্যুতে প্রত্নতাত্ত্বিকদের মধ্যে আলাদা আলাদা গ্রুপ সৃষ্টি হয়, পিটার আকো একে বলছেন "ঘেটো"। এই সময় প্রথমবারের মতো মানুষের ক্রিয়া প্রতিক্রিয়াকে পরিস্থিতি (সিচুয়েশন) এবং প্রেক্ষিত (কনটেক্সট) এর নিরিখে গবেষণা করার প্রচেষ্টা শুরু হয়। আরও পরিষ্কার করে বললে, প্রত্নতত্ত্বের রাজনৈতিক গুরুত্ব বৃদ্ধি পায়; অতীত মানুষের বিভিন্ন গোষ্ঠী, তাদের পারস্পরিক সম্পর্ক-সূত্র ও সম্পর্কের সামর্থ্য, রাজনৈতিক সংগঠন ও সামাজিক স্তরায়নকে আরও ঘনিষ্ঠভাবে বিশ্লেষণের মাধ্যমে ঊনিশশো আশির দশকের বিশ্ব পরিস্থিতির ব্যাখ্যা করার ও সমাধানের পথনির্দেশের জন্য প্রত্নতাত্ত্বিকরা তাদের অবস্থান থেকে অবদান রাখার চেষ্টা করেন। গোষ্ঠী, শ্রেণী, সীমানা, আদিবাসী, জাতিত্ব ইত্যাদি প্রকরণগুলো প্রত্নতত্ত্বে আলোচিত হতে থাকে। এই সময় আকো, জোনস ও আরও কিছু লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ভিত্তিক প্রত্নতাত্ত্বিকের উদ্যোগে কাজের তত্ত্ব বলে এক তত্ত্বহীন ঘেটো-র উদ্ভব ঘটে, এদের মূল বক্তব্য হলো- কাজ করতে করতেই একজন গবেষক তার তত্ত্ব খুঁজে পাবেন, যার সাথে পৃথিবীতে প্রচলিত অন্য তত্ত্বসমূহের কোনো মিল না-ও থাকতে পারে। কিন্তু অন্য তত্ত্বের প্রতি পূর্ব-ধারণার (প্রি-কনসেপ্ট) ফলে তিনি যদি ভ্রান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হন, সেটি সত্যিই বিপজ্জনক। প্রত্নতত্ত্বের কাজের পদ্ধতি জরিপ উৎখননের সম্ভাব্যতা বা বাস্তবতা যাচাই করার জন্যই জরিপ করা হয়।পদ্ধতিগতভাবে,প্রত্নস্থান বা প্রত্ননির্দশন শনাক্ত করা, খুঁজে বের করা,তা ভূ-পৃষ্ঠে চিহ্নত করা, মানচিত্রে শনাক্ত করা,এবং গবেষণার জন্য প্রয়োজনীয় তথ্য উপাত্ত সংগ্রহ করাকে প্রত্নতাত্ত্বিক জরিপ বলে। জরিপ গবেষণা ২ ধরনের হয়ে থাকে।যথাঃ ১.জরিপ-পূর্ব গবেষণা. ২.মাঠ জরিপ গবেষণা. অনুসন্ধান কোন প্রত্নতাত্ত্বিক উৎখননের পূর্বে প্রাকখনন গবেষণা সম্পাদন করতে হয়। এর জন্য প্রথম Archaeo- book study বা library work কার্য সম্পর্কে ধারণা অর্জন এর পর কোন জায়গায় প্রত্ননিদর্শন আছে কিনা বা ঐ স্থানটি প্রত্নস্থান কিনা তা পায়ে হেটে জরিপ/খুজে বের করার মাধ্যমকে অনুসন্ধান বলে। উৎখনন কোনো গবেষণার ক্ষেত্রে অনুসন্ধানের ঠিক পরের স্থানটি দখল করে আছে উৎখনন। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যা কোনো পুস্তকে লিপিবদ্ধ নয়। উৎখনন হলো এমন একটি বিষয় যা কোনো প্রত্নতত্ত্ববিদও পুনঃপুন খনন কার্য সম্পাদনের মাধ্যমেও কোনো প্রত্নস্থান সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়ার বিশেষ প্রক্রিয়া। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়া যেমন; grid পদ্ধতি, এরিয়াল ইমেজ, স্যাটেলাইট ইমেজ ইত্যাদি পদ্ধতি অবলম্বন করে উৎখনন কার্য সম্পন্ন করা যায়। সংরক্ষণ আমরা যখন কোনো প্রত্নস্থান থেকে কোন প্রকার প্রত্নবস্তুু পাই সেটাকে নানা প্রকার পদার্থ দ্বারা এটিকে তার সাথে মানানসই করে এটিকে কোন একটি জাদুঘর বা প্রত্নতাত্ত্বিক দর্শনীয় জায়গায় রাখি এটাই সংরক্ষণ।আবার যাতে কোনো প্রকার বিলুপ্তির আশংক্ষা না থাকে সে পর্যায়ে রাখাকে সংরক্ষণ বলে। নথিভুক্তকরণ আমরা যখন কোনো প্রত্নবস্তু পাই সেটি কীভাবে পেলাম,সেটি কোন সময়ের,তার ওজন কত,তার উচ্চতা,তার রং,তার নাম,কতটুকু মাটির নিচে পেলাম,কোন অঞ্চলের,এভাবে খুঁটিনাটি সব লিখাকেই বলে নথিভুক্তকরন। প্রত্নতত্ত্বের উপাদান প্রত্নতত্ত্বের উপাদান হিসেবে সাধারণভাবে ভৌত ধ্বংসাবশেষ, পরিবেশগত তথ্য, জৈব অবশেষ বা জীবাশ্ম, প্রাকৃতিক-সাংস্কৃতিক ভূদৃশ্যাবলী ইত্যাদিকে বিবেচনা করা হয়। তবে ভাবগত নিদর্শন যার আপাত অর্থে কোনো বহনযোগ্য, বাণিজ্যযোগ্য বা দৃশ্যমান অস্তিত্ব নাই এমন কোন বিষয়ও হতে পারে প্রত্নতাত্ত্বিকের প্রধান সূত্র।ক আরও দেখুন নৃতত্ত্ব নৃবিজ্ঞান বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর তথ্যসূত্র প্রত্নতত্ত্বের ইতিহাস ও নীতিমালা প্রত্নতত্ত্ব নৃবিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞান মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Archaeology
Archaeology
Archaeology or archeology is the study of human activity through the recovery and analysis of material culture. The archaeological record consists of artifacts, architecture, biofacts or ecofacts, sites, and cultural landscapes. Archaeology can be considered both a social science and a branch of the humanities. It is usually considered an independent academic discipline, but may also be classified as part of anthropology (in North America – the four-field approach), history or geography. Archaeologists study human prehistory and history, from the development of the first stone tools at Lomekwi in East Africa 3.3 million years ago up until recent decades. Archaeology is distinct from palaeontology, which is the study of fossil remains. Archaeology is particularly important for learning about prehistoric societies, for which, by definition, there are no written records. Prehistory includes over 99% of the human past, from the Paleolithic until the advent of literacy in societies around the world. Archaeology has various goals, which range from understanding culture history to reconstructing past lifeways to documenting and explaining changes in human societies through time. Derived from Greek, the term archaeology means "the study of ancient history". The discipline involves surveying, excavation, and eventually analysis of data collected, to learn more about the past. In broad scope, archaeology relies on cross-disciplinary research. Archaeology developed out of antiquarianism in Europe during the 19th century, and has since become a discipline practiced around the world. Archaeology has been used by nation-states to create particular visions of the past. Since its early development, various specific sub-disciplines of archaeology have developed, including maritime archaeology, feminist archaeology, and archaeoastronomy, and numerous different scientific techniques have been developed to aid archaeological investigation. Nonetheless, today, archaeologists face many problems, such as dealing with pseudoarchaeology, the looting of artifacts, a lack of public interest, and opposition to the excavation of human remains.
1256
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8
জ্যোতির্বিজ্ঞান
জ্যোতির্বিজ্ঞান (ইংরেজি Astronomy প্রতিশব্দটি শব্দটি থেকে উদ্ভূত) হল প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের একটি শাখা। এই শাখায় গ্রহ, প্রাকৃতিক উপগ্রহ, তারা, ছায়াপথ ও ধূমকেতু ইত্যাদি মহাজাগতিক বস্তু এবং অতিনবতারা বিস্ফোরণ, গামা রশ্মি বিচ্ছুরণ ও মহাজাগতিক অণুতরঙ্গ পটভূমি বিকিরণ প্রভৃতি ঘটনাবলি এবং সেগুলির বিবর্তনের ধারাটিকে গণিত, পদার্থবিজ্ঞান , রসায়ন ও ভূগোল এর মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ ও ব্যাখ্যা করা হয়। সাধারণভাবে বললে, পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে ঘটা সকল ঘটনাই জ্যোতির্বিজ্ঞানের এক্তিয়ারভুক্ত বিষয়। ভৌত বিশ্বতত্ত্ব নামে আরেকটি পৃথক শাখাও জ্যোতির্বিজ্ঞানের সঙ্গেই সম্পর্কিত। এই শাখায় সামগ্রিকভাবে মহাবিশ্ব নিয়ে বৈজ্ঞানিক পর্যালোচনা করা হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞান হল প্রাকৃতিক বিজ্ঞানের প্রাচীনতম শাখাগুলির অন্যতম। লিপিবদ্ধ ইতিহাসে দেখা যায় প্রাচীন ব্যাবিলনীয়, গ্রিক, ভারতীয়, মিশরীয়, নুবিয়ান, ইরানি, চিনা, মায়া ও বেশ কয়েকটি আমেরিকান আদিবাসী জাতিগোষ্ঠী নিয়মবদ্ধ প্রণালীতে রাতের আকাশ পর্যবেক্ষণ করত। ঐতিহাসিক দৃষ্টিকোণ থেকে জ্যোতির্মিতি, সেলেস্টিয়াল নেভিগেশন, পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং পঞ্জিকা প্রণয়নের মতো নানা রকম বিষয় ছিল জ্যোতির্বিজ্ঞানের অন্তর্গত। তবে আজকাল পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানকে প্রায়শই জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের সমার্থক মনে করা হয়। পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞান দু’টি উপশাখায় বিভক্ত: পর্যবেক্ষণমূলক ও তাত্ত্বিক। জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তুগুলিকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তথ্য সংগ্রহ করা এবং সেই সব তথ্য পদার্থবিজ্ঞানের মূল সূত্র অনুযায়ী ব্যাখ্যা করা পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞানের কাজ। অন্যদিকে তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞানে এই সব বস্তু ও মহাজাগতিক ঘটনাগুলি বর্ণনার জন্য কম্পিউটার বা অন্যান্য বিশ্লেষণধর্মী মডেল তৈরির কাজ করা হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানের এই দু’টি ক্ষেত্র পরস্পরের সম্পূরক। তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞান পর্যবেক্ষণের ফলাফলগুলির ব্যাখ্যা অনুসন্ধান করে। অন্যদিকে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে তাত্ত্বিক ফলাফলগুলির সত্যতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায়। বিজ্ঞানের অল্প কয়েকটি শাখায় এখনও অপেশাদারেরা প্রত্যক্ষ ভূমিকা গ্রহণ করে থাকেন। জ্যোতির্বিজ্ঞান এই শাখাগুলির অন্যতম। মূলত অস্থায়ী ঘটনাগুলি পর্যবেক্ষণ ও আবিষ্কারের ক্ষেত্রে অপেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ভূমিকা উল্লেখযোগ্য। নতুন ধূমকেতু আবিষ্কারের ক্ষেত্রেও তাঁদের অবদান যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। নাম-ব্যুৎপত্তি ইংরেজি ভাষায় অ্যাস্ট্রোনমি (Astronomy) শব্দটির অর্থ "নক্ষত্রের নিয়ম" (অথবা অনুবাদের তারতম্য অনুযায়ী "নক্ষত্র চর্চা")। অ্যাস্ট্রোনমি শব্দটি প্রাচীন গ্রিক ἀστρονομία শব্দটি থেকে উদ্ভূত। গ্রিক ἄστρον (উচ্চারণ: astron) শব্দটির অর্থ "নক্ষত্র" এবং -νομία (উচ্চারণ: -nomia) শব্দটি গ্রিক νόμος (উচ্চারণ: nomos) শব্দটি থেকে উদ্ভূত, যার অর্থ "নিয়ম" বা "চর্চা"। জ্যোতির্বিজ্ঞান ও জ্যোতিষশাস্ত্রের উৎস এক হলেও বর্তমানে এই দু’টিকে সম্পূর্ণ পৃথক বিষয় হিসেবেই ধরা হয়। জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা মহাজাগতিক বস্তু ও ঘটনাবলির বিজ্ঞানসম্মত ব্যাখ্যা অনুসন্ধান করেন। অন্যদিকে জ্যোতিষীগণ দাবি করেন, মহাজাগতিক বস্তুগুলির অবস্থান মানুষের দৈনন্দিন জীবনের উপর প্রভাব বিস্তার করে থাকে। "জ্যোতির্বিজ্ঞান" ও "জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান" শব্দ দু’টির ব্যবহার আলোচ্য বিষয়টিকে বোঝাতে পারিভাষিক "জ্যোতির্বিজ্ঞান" বা "জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান" শব্দ দু’টিই ব্যবহার করা যেতে পারে। সুস্পষ্ট আভিধানিক সংজ্ঞা অনুযায়ী, "জ্যোতির্বিজ্ঞান" হল "পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের বাইরে অবস্থিত বস্তু ও সংঘটিত ঘটনাবলি এবং সেগুলির প্রাকৃতিক ও রাসায়নিক গুণাবলির পর্যবেক্ষণ ও পর্যালোচনা" এবং "জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান" বলতে জ্যোতির্বিজ্ঞানের সেই শাখাটিকে বোঝায়, যেটিতে "মহাজাগতিক বস্তু ও ঘটনাবলির আচরণ, প্রাকৃতিক গুণাবলি ও গতিবিদ্যা-সংক্রান্ত পদ্ধতিগুলি" আলোচিত হয়। ফ্র্যাঙ্ক শু রচিত দ্য ফিজিক্যাল ইউনিভার্স নামক প্রাবেশিক পাঠ্যপুস্তকের ভূমিকা প্রভৃতি কয়েকটি ক্ষেত্রে বলা হয়েছে "জ্যোতির্বিজ্ঞান" শব্দটির দ্বারা বিষয়টির গুণগত পর্যালোচনা বোঝানো যেতে পারে। অন্যদিকে "জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান" শব্দটি ব্যবহা্র করা যেতে পারে বিষয়টির পদার্থবিদ্যা-সংক্রান্ত পর্যালোচনাকে। আধুনিক কালে জ্যোতির্বিজ্ঞান-সংক্রান্ত অধিকাংশ গবেষণা যেহেতু পদার্থবিজ্ঞান-সংক্রান্ত বিষয়গুলিকে নিয়ে করা হয়। সেই কারণে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানকে বস্তুত জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানও বলা যেতে পারে। জ্যোতির্মিতির মতো কয়েকটি বিষয় অবশ্য খানিকটা জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান হলেও বিশুদ্ধভাবে জ্যোতির্বিজ্ঞান। এই বিষয়টির ক্ষেত্রে বিজ্ঞানীরা যে বিভাগে গবেষণা করছেন, তার পরিপ্রেক্ষিতে "জ্যোতির্বিজ্ঞান" ও "জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান" শব্দ দু’টি ব্যবহার করা যেতে পারে। এই ব্যবহারের নেপথ্যেও দু’টি কারণ থাকে। প্রথমত, যদি বিভাগটি ঐতিহাসিকভাবে পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শাখা হিসেবে স্বীকৃত হয়, সেক্ষেত্রে বিষয়টি জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান হিসেবে চিহ্নিত হতে পারে; এবং দ্বিতীয়ত কোনো পেশাদার জ্যোতির্বিজ্ঞানী যদি জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিবর্তে পদার্থবিজ্ঞানে ডিগ্রি অর্জন করে এই বিভাগে যোগ দেন, সেক্ষেত্রেও বিভাগটিকে জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞান নামে অভিহিত করা যেতে পারে। এই বিষয়ের কয়েকটি অগ্রণী বিজ্ঞানবিষয়ক সাময়িক পত্রিকা হল দি অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল জার্নাল, দি অ্যাস্ট্রোফিজিক্যাল জার্নাল ও অ্যাস্ট্রোনমি অ্যান্ড অ্যাস্ট্রোফিজিক্স। ইতিহাস প্রাচীন যুগ প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞান সীমায়িত ছিল খালি চোখে দৃশ্যমান মহাজাগতিক বস্তুগুলির পর্যবেক্ষণ ও সেগুলির গতিবিধি সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর মধ্যেই। অনুমিত হয়, একাধিক প্রাচীন সভ্যতার অধিবাসীবৃন্দ জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে প্রচুরি যন্ত্রপাতি জোগাড় করেছিল। প্রথাগত আকাশ পর্যবেক্ষণের কাজ ছাড়াও সেই যুগের মানমন্দিরগুলিতে ঋতুনির্ণয়ের মাধ্যমে শস্যরোপনের সময় নির্ধারণ ও বছরের দৈর্ঘ্য মাপার কাজও চলত। কৃষিকার্যের ক্ষেত্রে এই দু’টি কাজ সেকালে ছিল অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। টেলিস্কোপ প্রভৃতি যন্ত্রপাতি আবিষ্কারের আগে পর্যন্ত নক্ষত্র পর্যবেক্ষণের কাজটি করা হত খালি চোখে। প্রাচীন মেসোপটেমিয়া, গ্রিস, পারস্য, ভারত, মিশর ও মধ্য আমেরিকায় জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত গবেষণার জন্য একাধিক মানমন্দির গড়ে তোলা হয়েছিল এবং মহাবিশ্বের প্রকৃতি সম্পর্কে বিভিন্ন ধারণা নিয়ে পর্যালোচনার কাজ শুরু হয়েছিল। প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণার প্রধান উপজীব্য বিষয় ছিল গ্রহ ও নক্ষত্রগুলির অবস্থানগত মানচিত্র অঙ্কন। এই বিজ্ঞানটিই আধুনিক যুগে জ্যোতির্মিতি নামে পরিচিত। এই জাতীয় পর্যবেক্ষণের ফলেই গ্রহগুলির গতি সম্পর্কে মানুষের আদিম ধারণাগুলি গড়ে ওঠে এবং মহাবিশ্বে সূর্য, চাঁদ ও পৃথিবীর প্রকৃতি দার্শনিক দৃষ্টিকোণ থেকে ব্যাখ্যা করার চেষ্টা শুরু হয়। সেই যুগে মনে করা হত, পৃথিবী মহাবিশ্বের কেন্দ্রস্থলে অবস্থিত এবং সূর্য, চাঁদ ও তারাগুলি পৃথিবীর চারিদিকে ঘুরছে। এই তত্ত্বটি ভূকেন্দ্রিক মডেল বা গ্রিক দার্শনিক টলেমির নামানুসারে টলেমীয় বিশ্বতত্ত্ব নামে পরিচিত। প্রাচীন কালে গাণিতিক ও বিজ্ঞানসম্মত জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার সূচনা একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায়। ব্যাবিলনীয়রা এই ধরনের জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার সূত্রপাত ঘটিয়েছিলেন। পরবর্তীকালে অন্যান্য সভ্যতাগুলিতে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার যে প্রথার সূত্রপাত ঘটে, তার ভিত্তিপ্রস্তর ব্যাবিলনীয়েরা স্থাপন করেছিলেন। তারাই প্রথম আবিষ্কার করেন যে, সারোস নামে একটি পুনরাবৃত্ত চক্রে চন্দ্রগ্রহণ ঘটে থাকে। ব্যাবিলনীয়দের পথ অনুসরণ করে প্রাচীন গ্রিস ও হেলেনীয় বিশ্বেও জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চায় উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছিল। মহাজাগতিক ঘটনাবলির যুক্তিসংগত বাস্তব ব্যাখ্যার অনুসন্ধানের সূত্রপাত ছিল গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের বৈশিষ্ট্য। খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দীতে অ্যারিস্টারকাস অফ সামোস চাঁদ ও সূর্যের আয়তন ও দূরত্ব হিসেব করেন এবং সৌরজগতের সূর্যকেন্দ্রিক রূপের ধারণাটি প্রস্তাব করেন। খ্রিস্টপূর্ব ২য় শতাব্দীতে হিপারকাস অয়নচলন আবিষ্কার করেন এবং চাঁদের আয়তন ও দূরত্ব গণনা করেন। প্রাচীনকালে জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা সংক্রান্ত যে সব যন্ত্রগুলি আবিষ্কৃত হয়েছিল বলে জানা যায়, তার মধ্যে অ্যাস্ট্রোল্যাবের মতো কয়েকটি যন্ত্র উদ্ভাবনও করেছিলেন হিপারকাস। হিপারকাস ১০২০টি তারার একটি পূর্ণাঙ্গ সুবিন্যস্ত তালিকা প্রস্তুত করেন এবং উত্তর গোলার্ধ থেকে দৃশ্যমান অধিকাংশ তারামণ্ডল গ্রিক জ্যোতির্বিজ্ঞান থেকেই উদ্ভূত। অ্যান্টিক্যাথেরা মেকানিজম (আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ১৫০-৮০ অব্দ) ছিল একটি প্রাচীন অ্যানালগ কম্পিউটার, যা প্রস্তুত করা হয়েছিল নির্দিষ্ট তারিখে সূর্য, চাঁদ ও গ্রহগুলির অবস্থান গণনা করার জন্য। এই ধরনের জটিল প্রযুক্তিগত যন্ত্রপাতি খ্রিস্টীয় ১৪শ শতাব্দীতে ইউরোপে যান্ত্রিক জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক ঘড়ি আবিষ্কারের আগে আসেনি। মধ্যযুগ মধ্যযুগের ইউরোপে খ্রিস্টীয় ১৩শ শতাব্দী পর্যন্ত জ্যোতির্বিজ্ঞানের চর্চা থমকে ছিল। অবশ্য এই সময় ইসলামি বিশ্বে এবং অন্যান্য অঞ্চলে জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার যথেষ্ট অগ্রগতিও হয়েছিল। ৯ম শতাব্দীর গোড়ার দিকে ইসলামি বিশ্বে প্রথম জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক মানমন্দিরগুলি গড়ে ওঠে। ৯৬৪ খ্রিষ্টাব্দে পারস্যদেশীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী আজোফি তার বুক অফ ফিক্সড স্টারস গ্রন্থে স্থানীয় জোটের বৃহত্তম ছায়াপথ অ্যান্ড্রোমিডার বর্ণনা দেন। ১০০৬ খ্রিষ্টাব্দে মিশরীয় আরব জ্যোতির্বিজ্ঞানী আলি ইবন রিদওয়ান ও চিনা জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা লিপিবদ্ধ ইতিহাসের উজ্জ্বলতম অ্যাপারেন্ট ম্যাগনিচিউড তারাজাগতিক ঘটনা এসএন ১০০৬ অতিনবতারা পর্যবেক্ষণ করেন। বিজ্ঞানের এই শাখায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন এমন কয়েকজন বিশিষ্ট ইসলামি (অধিকাংশ স্থলেই পারস্যদেশীয় বা আরব) জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ হলেন আল-বাট্টানি, থেবিট, আজোফি, আলবুমাসার, বিরুনি, আলজাকেল, আল-বিরজন্দি এবং মারাঘেহ ও সমরকন্দ মানমন্দিরের জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ। সেই যুগের জ্যোতির্বিজ্ঞানীগণ তারাগুলির আরবি নাম রেখেছিলেন। সেগুলি এই যুগে স্বতন্ত্র তারার নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। এও মনে করা হয় যে গ্রেট জিম্বাবোয়ে ও টিম্বাকটুর ধ্বংসাবশেষে হয়তো একটি জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত মানমন্দির ছিল। আগে ইউরোপীয়েরা বিশ্বাস করত প্রাক-ঔপনিবেশিক মধ্যযুগে সাহারা-নিম্ন আফ্রিকায় জ্যোতির্বিজ্ঞান সংক্রান্ত পর্যবেক্ষণের কাজ চলত না। তবে আধুনিক আবিষ্কারগুলি সেই ধারণা ভেঙে দিয়েছে। ছয় শতাব্দীরও বেশি সময় ধরে রোমান ক্যাথলিক চার্চ জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক ও সামাজিক সহযোগিতা প্রদান করেছিল। প্রাচীন জ্ঞানচর্চার পুনরুদ্ধারের সময় থেকে মধ্যযুগের শেষভাগে সংঘটিত বৈজ্ঞানিক পুনর্জাগরণের আগে পর্যন্ত অপর কোনো প্রতিষ্ঠান জ্যোতির্বিজ্ঞান চর্চার ক্ষেত্রে এতটা সহযোগিতা করতে পারেনি। চার্চের উদ্দেশ্য অবশ্য ছিল ইস্টারের তারিখটি নির্ণয় করা। বৈজ্ঞানিক বিপ্লব রেনেসাঁর সময় নিকোলাস কোপারনিকাস সৌর সিস্টেমের সূর্যকেন্দ্রিক মডেল প্রস্তাব করেছিলেন। গ্যালিলিও গ্যালিলি এবং জোহানেস কেপলারের দ্বারা তার কাজকে প্রসারিত এবং সংশোধন করা হয়েছিল। গ্যালিলিও তার পর্যবেক্ষণকে উন্নত করার জন্য টেলিস্কোপ ব্যবহার করেছিলেন। কেপলারই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি সূর্যকে কেন্দ্র করে অন্যান্য গ্রহগুলির গতির বিষয়টি সঠিকভাবে বর্ণনা করেছিলেন । যাইহোক, কেপলার তার সূত্রগুলো দ্বারা একটি তত্ত্ব প্রণয়ন করতে ব্যর্থ হয়েছিলেন। অবশেষে নিউটন তাঁর সেলেস্টিয়াল গতিবিদ্যা এবং মাধ্যাকর্ষণ সূত্র দ্বারা গ্রহের গতি ব্যাখ্যা করতে পেরেছিলেন। নিউটন প্রতিফলক দূরবীনের বিকাশ ঘটিয়েছিলেন । দূরবীনের আকার এবং গুণগত মানের উন্নয়নের ফলে আরো আবিষ্কার সম্ভবপর হয়েেছিল। ইংরেজ জ্যোতির্বিজ্ঞানী জন ফ্লামস্টেড ৩০০০ এরও বেশি নক্ষত্রকে তালিকাভুক্ত করেছিলনও বিস্তৃত তারকা ক্যাটালগ লাকাইল দ্বারা তৈরি হয়েছিল । জ্যোতির্বিজ্ঞানী উইলিয়াম হার্শেল নেবুলাসিটি এবং ক্লাস্টারগুলির একটি বিস্তারিত তালিকা তৈরি করেছিলেন এবং ১৭৮১ সালে তিনি ইউরেনাস গ্রহটি আবিষ্কার করেছিলেন। একটি স্টারের দূরত্ব প্রথম ১৮৩৮ সালে ঘোষণা করা হয়েছিল এবং ৬১ সাইগনি এর প্যারালাক্স ফ্রেডরিক বিসেল দ্বারা পরিমাপ করা হয়েছিল। আঠারো-উনিশ শতকের মাঝামাঝি সময়ে অয়লার, ক্লায়র্ট এবং ডি'আলেমবারটের তিনটি গঠনগত সমস্যার গবেষণা চন্দ্র এবং গ্রহের গতি সম্পর্কে আরও নির্ভুল ভবিষ্যদ্বাণী করেছিল । এই কাজটিকে লাগরানজ এবং ল্যাপলেস দ্বারা আরও পরিমার্জিত করা হয়েছিল, যার ফলে গ্রহগুলির এবং চন্দ্রের গতিবিধি তাদের প্রতিক্রিয়া থেকে অনুমান করা যায়। জ্যোতির্বিজ্ঞানে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতিটি মূলত নতুন প্রযুক্তি স্পেকট্রোস্কোপ এবং ফটোগ্রাফি প্রবর্তনের মধ্য দিয়ে এসেছিল। ১৮১৪-১৫ সালে সূর্যের বর্ণালীতে ফ্রানহোফার প্রায় ৬০০ ব্যান্ড আবিষ্কার করেছিলেন, যা ১৮৫২ সালে কারশফ বিভিন্ন উপাদানগুলির উপস্থিতিতে এর নামকরণ করেছিলেন । তারা পৃথিবীর নিজস্ব সূর্যের সমতুল্য প্রমাণিত হয়েছে কিন্তু বিস্তৃত তাপমাত্রা এবং আকারের ভিন্নতা আছে । পৃথিবীর ছায়াপথের অস্তিত্ব, নীহারিকা, নক্ষত্রগুলির একটি পৃথক দল হিসেবে "বাইরের" ছায়াপথের অস্তিত্ব বিংশ শতাব্দীতে প্রমাণিত হয়েছিল। ঐ গ্যালাক্সির নিবিড় পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে এই মহাবিশ্ব সম্প্রসারণের বিষয়টি আবিষ্কার হয়েছিল। তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞান বস্তুর অস্তিত্ব যেমন কালপুরুষ এবং নিউট্রন তারা, তাছাড়া পরিলক্ষিত ঘটনা ব্যাখ্যা করতে ব্যবহৃত হয়েছে কোয়াসারস, পালসার, ব্লাজার, এবং রেডিও ছায়াপথ । বিংশ শতাব্দীর সময় মহাজাগতিক মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন, হাবলের সূত্র এবং বিগ ব্যাং এর গঠন, মহাজাগতিক প্রাচুর্য দ্বারা উপলব্ধ প্রমাণ দ্বারা ব্যাপকভাবে সমর্থিত, যার ফলে ভৌত কসমোলজিতে ব্যাপক অগ্রগতি সাধিত হয়। অবলোকন/পর্যবেক্ষণ জ্যোতির্বিদ্যা মহাকাশগত বিষয় এবং অন্যান্য বস্তু সম্পর্কে আমাদের তথ্যের প্রধান উৎস হল দৃশ্যমান আলো আরও সাধারণভাবে বলা যায় ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বিকিরণ। ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালীর পরিমার্জিত অঞ্চলের পরিপ্রেক্ষিতে অবলোকন জ্যোতির্বিজ্ঞানকে ভাগ করা যেতে পারে। মহাকর্ষের কিছু অংশ পৃথিবীর পৃষ্ঠ থেকে দেখা যেতে পারে এবং অন্য অংশগুলি উচ্চতর উচ্চতা বা পৃথিবীর বায়ুমন্ডলের বাইরে থেকে পর্যবেক্ষণযোগ্য। এই উপ-ক্ষেত্রগুলির উপর নির্দিষ্ট তথ্য নিচে দেওয়া হল। রেডিও জ্যোতির্বিদ্যা রেডিও জ্যোতির্বিজ্ঞান দৃশ্যমান পরিসীমার বাইরে বিকিরণ ব্যবহার করে যা প্রায় এক মিলিমিটারের চেয়ে বেশি তরঙ্গদৈর্ঘ্য। রেডিও জ্যোতির্বিদ্যা বেশিরভাগ পর্যবেক্ষণ জ্যোতির্বিজ্ঞান থেকে আলাদা, যেটি পর্যবেক্ষণকৃত রেডিও তরঙ্গকে আলাদা ফোটনসের পরিবর্তে তরঙ্গ হিসেবে গণ্য করা যায়। অতএব, রেডিও তরঙ্গের দিক এবং প্রশস্ততা পরিমাপ করা তুলনামূলকভাবে সহজ, যদিও এটি ক্ষুদ্র তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মধ্যে সহজেই করা যায় না। যদিও কিছু রেডিও তরঙ্গ জ্যোতির্বিদ্যাগত বস্তুর দ্বারা সরাসরি নির্গত হয়, তেজস্ক্রিয় নির্গমনের একটি পণ্য, বেশিরভাগ রেডিও নিঃসরণ দেখা যায় যা হল সিঙ্ক্রোট্রন বিকিরণের ফলাফল, যখন ইলেকট্রন চুম্বক ক্ষেত্রকে অতিক্রম করে তখন এটি উৎপন্ন হয়। উপরন্তু, ২১ সেমি এ হাইড্রোজেন বর্ণালী লাইন হল আন্তঃলেখ গ্যাস দ্বারা উৎপন্ন বর্ণালী লাইনের একটি সংখ্যা যা রেডিও তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মধ্যে পর্যবেক্ষণযোগ্য। বিভিন্ন ধরনের বস্তু রেডিও তরঙ্গদৈর্ঘ্যের মাধ্যমে, যেমন-সুপারনোভা, আন্তঃলেখার গ্যাস, পালসার এবং সক্রিয় গ্যালাক্টিক নিউক্লিয়াস সহ পর্যবেক্ষণযোগ্য। ইনফ্রারেড জ্যোতির্বিদ্যা ইনফ্রারেড জ্যোতির্বিদ্যা ইনফ্রারেড বিকিরণ শনাক্তকরণ এবং বিশ্লেষণের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠিত হয়, তাছাড়া তরঙ্গদৈর্ঘ্য যা লাল আলোর চেয়ে ব্যাপক এবং আমাদের দৃষ্টি পরিসীমার বাইরে তা শনাক্ত করার জন্য এই জ্যোতির্বিদ্যা ব্যবহৃত হয় । ইনফ্রারেড বর্ণালী এমন বস্তুগুলি অধ্যয়ন করতে সহায়ক যা এত বেশি ঠাণ্ডা যে দৃশ্যমান আলো বিকিরণ করতে পারেনা, যেমন গ্রহ, পারসেসেলার ডিস্ক বা নিবোলা যার আলোটি ধূলিকণা দ্বারা আটকে যায়। ইনফ্রারেডের দীর্ঘ তরঙ্গদৈর্ঘ্যটি ধুলোর মেঘকে ভেদ করতে পারে যা দৃশ্যমান আলোকে ব্লক করে, যার ফলে আণবিক মেঘ এবং আকাশে আচ্ছাদিত ছোট বড় ছায়াপথগুলিকে পর্যবেক্ষণ করা যায়। ওয়াইড-ফিল্ড ইনফ্রারেড সার্ভে এক্সপ্লোরার (ডব্লিউআইএসই) থেকে পর্যবেক্ষণগুলি অসংখ্য গ্যালাক্টিক প্রোটোস্টার এবং তাদের হোস্ট স্টার ক্লাস্টারগুলির উন্মোচন করার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে কার্যকর। দৃশ্যমান আলোর কাছাকাছি ইনফ্রারেড তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ব্যতিক্রম ছাড়া, যেমন বিকিরণ বায়ুমণ্ডল দ্বারা ব্যাপকভাবে শোষিত হয় বা মুখোশযুক্ত তাছাড়া বায়ুমণ্ডল নিজেই উল্লেখযোগ্য ইনফ্রারেড নির্গমন উৎপাদন করে। ফলস্বরূপ, ইনফ্রারেড পর্যবেক্ষণ কেন্দ্রগুলিকে পৃথিবীর মধ্যে শুষ্ক বা উচ্চতর স্থানে বা মহাকাশে অবস্থিত হতে হবে। কিছু অণু ইনফ্রারেড এর মধ্য দিয়ে দৃঢ়ভাবে বিকিরণ ঘটে। এটি মহাকাশ গবেষণা করতে এমনকি আরও বিশেষভাবে এটি ধূমকেতুর মধ্যে জল শনাক্ত করতে পারে। অপটিক্যাল জ্যোতির্বিদ্যা ঐতিহাসিকভাবে অপটিক্যাল জ্যোতির্বিজ্ঞানকে দৃশ্যমান আলো জ্যোতির্বিদ্যা নামেও অভিহিত করা হয়, এটি জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রাচীনতম রূপ। পর্যবেক্ষণের ছবিগুলো মূলত হাত দ্বারা অঙ্কিত ছিল। ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে এবং বিংশ শতকের দিকে বেশিরভাগ সময় ছবিগুলি ফোটোগ্রাফিক সরঞ্জাম ব্যবহার করে তৈরি করা হয়েছিল। আধুনিক চিত্রগুলি ডিজিটাল ডিটেক্টর ব্যবহার করে তৈরি করা হয়, বিশেষ করে চার্জ-সংযুক্ত ডিভাইস (সিসিডি) ব্যবহার করে এবং আধুনিক মিডিয়ায় রেকর্ড করা হয়। যদিও দৃশ্যমান আলো নিজেই প্রায় ৪০০০ থেকে ৭০০০ Å (৪০০ এনএম থেকে ৭০০ এনএম) পর্যন্ত বিস্তৃত, কিছু কাছাকাছি অতিবেগুনী এবং নিকটবর্তী-ইনফ্রারেড বিকিরণ পর্যবেক্ষণ করার জন্য একই সরঞ্জাম ব্যবহার করা যেতে পারে। অতিবেগুনী জ্যোতির্বিদ্যা অতিবেগুনী জ্যোতির্বিদ্যা প্রায় ১০০ এবং ৩২০০ এ (১০ থেকে ৩২০ এনএম) মধ্যে অতিবেগুনী তরঙ্গদৈর্ঘ্যকে কাজে লাগায়। এই তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দ্বারা শোষিত হয়, এই তরঙ্গদৈর্ঘ্য পর্যবেক্ষণের জন্য উপরিভাগের বায়ুমণ্ডলে বা মহাকাশ প্রয়োজন। অতিবেগুনী জ্যোতির্বিজ্ঞান তরল বিকিরণ এবং বর্ণালী নির্গমনের বিষয়গুলি নীল নক্ষত্র (ওবি নক্ষত্র) থেকে গবেষণা করা যায় যার তরঙ্গ ব্যান্ড খুব উজ্জ্বল হয় । অন্যান্য ছায়াপথের নীল নক্ষত্রগুলি তার অন্তর্ভুক্ত, যা বিভিন্ন অতিবেগুনী সার্ভের লক্ষ্যমাত্রা হয়েছে। অতিবেগুনী আলোর মাধ্যমে সাধারণত যাদের দেখা যায় তাদের মধ্যে গ্রহীয় নীহারিকা, সুপারনোভা অবশিষ্টাংশ এবং সক্রিয় গ্যালাক্টিক নিউক্লিও অন্যতম। যাইহোক, অতিবেগুনি রশ্মিটি সহজেই মহাজাগতিক ধুলো দ্বারা শোষিত হয়, তাই অতিবেগুনী পরিমাপের একটি সমন্বয় প্রয়োজন। এক্স-রে জ্যোতির্বিদ্যা এক্স-রে জ্যোতির্বিজ্ঞান এক্স-রে তরঙ্গদৈর্ঘ্য ব্যবহার করে। সাধারণত, এক্স-রে বিকিরণটি সিঙ্ক্রোট্রন নির্গমন ( ইলেকট্রনগুলির চৌম্বক ক্ষেত্রের উপর ঘূর্ণনের ফলাফল), ১০৭ (১০ মিলিয়ন) কেলভিনের উপরে পাতলা গ্যাস থেকে তাপ নির্গমন, এবং ১০৭ কেলভিনের উপরে পুরু গ্যাস থেকে তাপ নির্গমন দ্বারা উৎপন্ন হয়। যেহেতু এক্স-রেগুলি পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দ্বারা সঞ্চারিত হয়, তাই এক্স-রে পর্যবেক্ষণগুলি উচ্চ-উচ্চতার বেলুন, রকেট বা এক্স-রে জ্যোতির্বিদ্যা উপগ্রহগুলি থেকে সম্পাদিত হবে। উল্লেখযোগ্য এক্স রে উৎসগুলো হল এক্স-রে বাইনারি, পালসার, সুপারনোভার অবশিষ্টাংশ, উপবৃত্তাকার গ্যালাক্সি, গ্যালাক্সির ক্লাস্টার এবং সক্রিয় গ্যালাক্টিক নিউক্লিয়াস। গামা-রে জ্যোতির্বিদ্যা গামা রশ্মি জ্যোতির্বিজ্ঞান ইলেক্ট্রোম্যাগনেটিক বর্ণালীর সংক্ষিপ্ততম তরঙ্গদৈর্ঘ্যে জ্যোতির্বিদ্যাগত বস্তুগুলি পর্যবেক্ষণ করে। গামা রশ্মিগুলি সরাসরি উপগ্রহগুলি দ্বারা পর্যবেক্ষণ করা যেতে পারে, যেমন কম্পটন গামা রে অবজারভেটরি বা বায়ুমণ্ডলীয় চেরেনকভ টেলিস্কোপ নামে বিশেষ দূরবীন দ্বারা। চেরেনকোভ টেলিস্কোপগুলি গামা রশ্মিকে সরাসরি শনাক্ত করতে পারে না বরং গামা রশ্মি যখন পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল দ্বারা নিঃসৃত হয় ঠিক তখনি দৃশ্যমান আলোর আলোকে শনাক্ত করতে পারে । সর্বাধিক গামা-রে নির্গত উৎসগুলি আসলে গামা-রে বিস্ফোরণ, বস্তু যা শুধুমাত্র গামা রশ্মি উৎপাদন করে বিকল হয়ে যাওয়ার কয়েক মিলিসেকেন্ডের এবং হাজার হাজার সেকেন্ড আগে। শুধুমাত্র ১০% গামা-রে উৎসগুলি হল অস্থায়ী উৎস। এই স্থির গামা-রে নির্গমনকারীর মধ্যে পালসার, নিউট্রন স্টার এবং ব্ল্যাক হোলের মত প্রার্থী যেমন- সক্রিয় গ্যালাক্টিক নিউক্লিয়িও অন্তর্ভুক্ত। তড়িৎচুম্বকীয় বর্ণালীর উপর ভিত্তি করে নয় এমন ক্ষেত্রসমূহ তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ ছাড়াও আরও কিছু ঘটনাগুলি পৃথিবী থেকে দেখা যায়। নিউট্রিনো জ্যোতির্বিদ্যাতে নিউট্রিনো শনাক্তকরণের জন্য জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা তীব্রভাবে পরিলক্ষিত ভূগর্ভস্থ সুবিধাসমূহ যেমন এসএজিই, গাল্লেক্স এবং কামোকো ২/ ৩ ব্যবহার করে। পৃথিবীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত নিউট্রিনোগুলির অধিকাংশই সূর্য থেকে উৎপন্ন হয়, তবে ২৪টি নিউট্রিনোও সুপারনোভা ১৯৮৭এ থেকে পাওয়া গিয়েছিল । মহাজাগতিক রশ্মি, যা খুব উচ্চ শক্তিসম্পন্ন কণা (পারমাণবিক নিউক্লিয়াস) দ্বারা গঠিত যা পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে প্রবেশ করলে ক্ষয় বা শোষিত হতে পারে, এর ফলে দ্বিতীয় কণাগুলির একটি ধারাপ্রবাহ হয় যা বর্তমান পর্যবেক্ষণকারীদের দ্বারা শনাক্ত করা যায়। কসমিক দণ্ড পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলে আঘাত করলে কিছু ভবিষ্যতের নিউট্রিনো ডিটেক্টরগুলিও কণার সংস্পর্শে স্পর্শকাতর হতে পারে। মহাকর্ষীয়-তরঙ্গ জ্যোতির্বিদ্যা একটি উদীয়মান ক্ষেত্র যা মহাকর্ষীয়-তরঙ্গ ডিটেক্টরগুলি দূরবর্তী বিশাল বস্তুর সম্পর্কে পর্যবেক্ষণীয় তথ্য সংগ্রহের কাজে নিয়োজিত করে। কিছু পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে যেমন লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্ৰাভিটেশনাল অবসার্ভেটরি বা লাইগো (LIGO)। ১৪ই সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে লিগোর প্রথম আবিষ্কারটি বাইনারি ব্ল্যাক হোল থেকে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে পাওয়া গিয়েছিল । দ্বিতীয় মহাকর্ষীয় তরঙ্গটি ২৬ ডিসেম্বর ২০১৫ তারিখে শনাক্ত করা হয়েছিল এবং অতিরিক্ত পর্যবেক্ষণ অব্যাহত থাকা দরকার তবে মহাকর্ষীয় তরঙ্গগুলির জন্য অত্যন্ত সংবেদনশীল যন্ত্রের প্রয়োজন। তড়িৎচুম্বকীয় বিকিরণ, নিউট্রিনো বা মহাকর্ষীয় তরঙ্গ এবং অন্যান্য পরিপূরক তথ্য ব্যবহার করে পর্যবেক্ষণের সংমিশ্রণটি করা হয়েছে যা মাল্টি-ম্যাসেঞ্জার জ্যোতির্বিজ্ঞান নামে পরিচিত। অ‍্যাস্ট্রোমেট্রি এবং মহাকাশ বলবিদ্যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের প্রাচীনতম ক্ষেত্রগুলির মধ্যে এটি একটি এবং সমস্ত বিজ্ঞানের মধ্যে স্বর্গীয় বস্তুর পরিমাপের জন্য তার প্রয়োজন হয়। ঐতিহাসিকভাবে, সূর্য, চাঁদ, গ্রহ এবং নক্ষত্রগুলির সঠিক অবস্থানের জন্য মহাকাশীয় বস্তু (মহাকাশীয় বস্তুগুলির ব্যবহার নির্দেশিকা পরিচালনা) এবং ক্যালেন্ডার তৈরির ক্ষেত্রেও এটি প্রয়োজনীয়। গ্রহের অবস্থানের সঠিক পরিমাপ মাধ্যাকর্ষণ বিষয়ক বিষয়গুলোকে ভালোভাবে বুঝতে সহায়তা করেছে এবং অতীত এবং ভবিষ্যতের নির্ভুল অবস্থান নির্ধারণ করার ক্ষমতা যার আছে তাকে মহাকাশ বলবিদ্যা বলা হয়। সম্প্রতি নিকটবর্তী পৃথিবীর বস্তুর ট্র্যাকিংগুলি বস্তুর সাথে ঘনিষ্ঠ সাক্ষাত বা পৃথিবীর সম্ভাব্য সংঘর্ষের পূর্বাভাস দিবে। নিকটবর্তী নক্ষত্রপুঞ্জের ঊর্ধ্বগামী র পরিমাপ মহাবিশ্বের স্কেল পরিমাপের জন্য ব্যবহার করা মহাকাশমুখী দূরত্বের একটি মৌলিক ভিত্তি প্রদান করে। নিকটবর্তী নক্ষত্রগুলির প্যারালাক্স পরিমাপ আরও দূরবর্তী নক্ষত্রগুলির বৈশিষ্ট্যগুলির জন্য একটি সুনির্দিষ্ট বেস-লাইন প্রদান করে কারণ তাদের বৈশিষ্ট্যগুলি তুলনা করা যায়। রাডিয়াল বেগের পরিমাপ এবং তারার সঠিক গতিকে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা আকাশগঙ্গার ছায়াপথের আন্দোলনকে সংগঠিত হতে সহায়তা করে। জ্যোতির্বিদ্যাগত ফলাফলগুলি ছায়াপথের অনুমানকৃত কৃষ্ণ বস্তুর(Dark matter) বণ্টন গণনা করার জন্য ব্যবহৃত হয় । ১৯৯০-এর দশকে মাঝামাঝি সময়ে নক্ষত্রপুঞ্জের কাছাকাছি বড় পরিমাপের ঘূর্ণনকারী গ্রহের সন্ধানের জন্য স্টেলার উবল পরিমাপ পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিদ্যা তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশ্লেষণাত্মক মডেল এবং গণনীয় সংখ্যাসূচক সিমুলেশন সহ বিভিন্ন সরঞ্জাম ব্যবহার করে ; প্রতিটির নিজস্ব বিশেষ সুবিধা আছে। বিশ্লেষণাত্মক মডেল হল একটি প্রক্রিয়া যা সাধারণত যা চলছে তার কেন্দ্রে বৃহত্তর অন্তর্দৃষ্টি প্রদানের জন্য ভাল। সংখ্যাসূচক মডেলগুলি ঘটনার অস্তিত্ব প্রকাশ করে এবং অপর্যবেক্ষিত প্রভাবগুলি প্রকাশ করে। জ্যোতির্বিজ্ঞানে তত্ত্ববিদরা তাত্ত্বিক মডেল তৈরির চেষ্টা করেন এবং ঐ ফলাফলগুলি থেকে সেই মডেলগুলির পর্যবেক্ষণগত ফলাফলগুলির পূর্বাভাস প্রদান করে । একটি মডেল দ্বারা পূর্বাভাস দেওয়া ঘটনাটির পর্যবেক্ষণ জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের ঘটনাটি বর্ণনা করতে বেশ কিছু বিকল্প বা বিবাদমূলক মডেল মধ্যে নির্বাচন করতে পারবেন যা ঘটনাকে ভালভাবে বর্ণনা করতে সক্ষম। থিয়োরিস্টরা নতুন ডেটা গ্রহণ করার জন্য মডেল তৈরি বা সংশোধন করারও চেষ্টা করে। তথ্য এবং মডেল এর ফলাফলের অসঙ্গতির ক্ষেত্রে, সাধারণ প্রবণতা মডেলের ন্যূনতম পরিবর্তন করতে চেষ্টা করা হয় যাতে করে এটি তথ্য মাপসই ফলাফল উৎপাদন করতে পারে । কিছু কিছু ক্ষেত্রে সময়ের সাথে অসঙ্গতিপূর্ণ উপাত্ত সম্পূর্ণ মডেলটিকে নষ্ট করে দিতে পারে। তাত্ত্বিক জ্যোতির্বিদদের দ্বারা পরিচালিত ঘটনার অন্তর্ভুক্ত হল: স্টেলার ডাইনামিক্স এবং বিবর্তন; ছায়াপথ গঠন; মহাবিশ্বের বৃহৎ পরিসরে বস্তুর বণ্টন; মহাজাগতিক রশ্মির উৎপত্তি; সাধারণ আপেক্ষিকতা এবং শারীরিক ব্রহ্মবিদ্যা, স্ট্রিং বিশ্বতত্ত্ব এবং এ্যাস্ট্রোপার্টিকেল পদার্থবিদ্যা । মহাজাগতিক আপেক্ষিকতা একটি বৃহৎ স্কেলে স্ট্রাকচারের বৈশিষ্ট্যগুলি হিসাব করার জন্য একটি হাতিয়ার হিসাবে কাজ করে, যার জন্য মাধ্যাকর্ষণ আবিষ্কারের ক্ষেত্রে শারীরিক ঘটনাগুলির মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এবং ব্ল্যাক হোল (অ্যাস্ট্রো) পদার্থবিদ্যা এবং মহাকর্ষীয় তরঙ্গের গবেষণার ভিত্তি হিসাবে কাজ করে। জ্যোতির্বিজ্ঞানে কিছু ব্যাপকভাবে গৃহীত তত্ত্ব ও গবেষণা এবং মডেলগুলি, এখন লাম্বা-সিডিএম মডেলের মধ্যে রয়েছে বিগ ব্যাং, মহাজাগতিক মুদ্রাস্ফীতি, কৃষ্ণ বস্তু (dark matter) এবং পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক তত্ত্বসমূহ। এই প্রক্রিয়াটির কয়েকটি উদাহরণ: নির্দিষ্ট উপশাখাগুলি সৌর জ্যোতির্বিদ্যা প্রায় আট আলোক মিনিটের দূরত্বের মধ্যে সবচেয়ে বেশি অধ্যয়নরত তারাটি হল সূর্য, সাধারণ ধারার বামন তারার শ্রেণী হল জি২ ভি যা প্রায় ৪.৬ বিলিয়ন বছর (জিওয়াইআর) পুরানো। সূর্য একটি ভ্যারিয়েবল তারকা বলে বিবেচিত হয় না, তবে এটি সূর্য-স্পট চক্র হিসাবে পরিচিত কার্যকলাপের মধ্যে পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনের দ্বারা পরিচালিত হয়। সূর্য-স্পট সংখ্যাটিতে এটি ১১ বছরের দোলন সম্পন্ন। সূর্য -স্পটগুলি গড় তাপমাত্রার তুলনায় অনেক কম হয় যা তীব্র চুম্বকীয় কার্যকলাপের সাথে সম্পর্কযুক্ত। সূর্য একটি প্রধান-ধারার তারকা হয়ে উঠার পর ধীরে ধীরে তার উজ্জ্বলতা প্রায় ৪০% বৃদ্ধি পেয়েছে । সূর্য এমন উজ্জ্বলতার পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে যা পৃথিবীর উপর একটি উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলতে পারে । উদাহরণস্বরূপ, মাধ্যাকর্ষণ সর্বনিম্ন হওয়ার ফলে মধ্যযুগের সময় ছোট বরফ যুগের ঘটনাটি ঘটেছিল বলে মনে করা হয়। সূর্যের দৃশ্যমান বাইরের পৃষ্ঠাকে ফটোস্ফিয়ার বলা হয়। এই স্তরের উপরে পাতলা একটি অঞ্চল যা ক্রোমোস্ফিয়ার নামে পরিচিত । এটি দ্রুত বর্ধনশীল তাপমাত্রার একটি সংক্রমণ অঞ্চল দ্বারা পরিবেষ্টিত এবং অবশেষে এটি সুপার উত্তাপ করোনা দ্বারা বেষ্টিত। সূর্যের কেন্দ্রীয় অঞ্চলটি হল মূল, পারমাণবিক ফিউশনের জন্য যথেষ্ট তাপমাত্রা এবং চাপের একটি ভলিউম এখানে বিদ্যমান । কোরের উপরে হল বিকিরণ রশ্মির জোন, যেখানে শক্তি প্রবাহ প্লাজমা বিকিরণের মাধ্যমে সম্পন্ন হয়য় । উপরে হল পরিচলন জোন যেখানে গ্যাসের উপাদান প্রাথমিক ভাবে গ্যাসের শারীরিক স্থানচ্যুতির মাধ্যমে উত্তোলন করে যাকে বলা হয় পরিচলন। এটা বিশ্বাস করা হয় যে পরিচলন জোনের মধ্যে ভরের গতির চুম্বকীয় কার্যকলাপ তৈরি করে যা সান-স্পট তৈরি করে। প্লাজমা পার্টিকেলের একটি সৌর বায়ু ক্রমবর্ধমানভাবে বাষ্পীভূত হতে থাকে সূর্যের বাইরের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত এটি হেলিওপোজ পর্যন্ত পৌঁছায়। সৌর বায়ু পৃথিবী অতিক্রম করে এটি পৃথিবীর চৌম্বক ক্ষেত্রের সাথে মিথষ্ক্রিয়া ঘটায় এবং সৌর বায়ুকে অগ্রাহ্য করে, কিন্তু ফাঁদ কিছু ভ্যান এলেন বিকিরণ বেল্ট তৈরি করে যা পৃথিবীকে ঢেকে দেয়। অরোরা তৈরি করা হয় তখন যখন সৌর বায়ু কণা চুম্বকীয় প্রবাহ লাইন দ্বারা পরিচালিত হয় পৃথিবীর মেরু অঞ্চলে যেখানে লাইনগুলি বায়ুমণ্ডলে অবতরণ করে। গ্রহজনিত বিজ্ঞান গ্রহ বিজ্ঞান হল গ্রহ, চাঁদ, বামন গ্রহ, ধূমকেতু, গ্রহাণু, এবং সূর্যের পাশে ঘূর্ণনশীল অন্যান্য বস্তুর সমাহার এবং সেইসাথে এক্সট্রাসোলার গ্রহগুলির সমাহার নিয়ে গবেষণা সংক্রান্ত বিজ্ঞান। সোলার সিস্টেম অপেক্ষাকৃত ভালভাবে অধ্যয়ন করা হয়েছে প্রাথমিকভাবে টেলিস্কোপের মাধ্যমে এবং পরবর্তীতে মহাকাশযান দ্বারা। এগুলো কীভাবে গ্রহ গঠিত এবং বিবর্তিত হয়েছে সেই ব্যাপারে ধারণা প্রদান করেছে, যদিও অনেক নতুন আবিষ্কার এখনও করা হচ্ছে। সৌর সিস্টেমকে ভিতরের গ্রহ, গ্রহাণু বেল্ট এবং বাইরের গ্রহগুলি নিয়ে উপবিভাগে বিভক্ত করা হয়। ভূপৃষ্ঠের পার্থিব গ্রহগুলি বুধ, শুক্র, পৃথিবী এবং মঙ্গল নিয়ে গঠিত। বাইরের গ্যাসীয় বৃহৎ গ্রহগুলি হল বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন। নেপচুনের বাইরে কুইপার বেল্ট এবং অবশেষে ওর্ট ক্লাউড রয়েছে যা আলোক বর্ষ পর্যন্ত প্রসারিত হতে পারে। সূর্যের চারপাশে প্রোটোপ্লেনেটানারি ডিস্কের মধ্যে ৪.৬ বিলিয়ন বছর আগে গ্রহগুলি গঠিত হয়েছিল। মহাকর্ষীয় আকর্ষণ, সংঘর্ষ এবং সংশ্লেষণের একটি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে ডিস্কটি বস্তুর সংমিশ্রণ সৃষ্টি করে যা সময়ের সাথে সাথে প্রোটোপ্লানেট হয়ে ওঠে। সৌর বায়ুর রশ্মির চাপ তখন অসমর্থিত বস্তু ত্যাগ করে, এবং ঐ যথেষ্ট সংখ্যক গ্রহই তাদের গ্যাসীয় বায়ুমণ্ডল বজায় রেখেছিল। চাঁদের উপরিভাগে প্রভাবশালী ক্রুটার দ্বারা প্রমাণিত হয় যে তীব্র বোমা বর্ষণের সময় গ্রহগুলি ক্রমাগত ঝাঁকানি খায় যায় বা বের করে দেয়। এই সময়কালে কিছু প্রোটোপ্ল্যানেট সংঘর্ষের শিকার হতে পারে এবং এই ধরনের সংঘর্ষের ফলে চাঁদের সৃষ্টি হতে পারে। একটি গ্রহ একবার যথেষ্ট ভরে পৌঁছলে গ্রহের পার্থক্যের সময় বিভিন্ন ঘনত্বের উপাদান বিভক্ত হয়ে পড়ে। এই প্রক্রিয়াটি একটি পাথুরে বা ধাতব কেন্দ্র গঠন করতে পারে যা একটি আচ্ছাদন এবং বাইরের স্ফীত দ্বারা ঘিরে থাকতে পারে । কোর দৃঢ় এবং তরল অঞ্চলের অন্তর্ভুক্ত হতে পারে এবং কিছু গ্রহের কোরা তাদের নিজস্ব চৌম্বকীয় ক্ষেত্র উৎপন্ন করে, যা তাদের বায়ুমণ্ডলকে সৌর বায়ু প্রবাহ থেকে রক্ষা করতে পারে। একটি গ্রহ বা চাঁদের অভ্যন্তরে তাপ উৎপন্ন হয় তেজস্ক্রিয় পদার্থসমূহের (যেমন ইউরেনিয়াম, তেজস্ক্রিয় ধাতু, এবং ২৬এল) মিথস্ক্রিয়া দ্বারা সৃষ্ট জোয়ারের তাপ দ্বারা। কিছু গ্রহ এবং চন্দ্র আগ্নেয় অগ্ন্যুৎপাত এবং টেকটনিকস এর ভূতাত্ত্বিক প্রক্রিয়া চালানোর জন্য যথেষ্ট তাপ জমা করে। যে বায়ুমণ্ডল জমা বা বজায় রাখে তাও বায়ু বা জল থেকে পৃষ্ঠ ক্ষয়ের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। নাক্ষত্রিক জ্যোতির্বিদ্যা মহাবিশ্ব সম্পর্কে আমাদের বোধগম্যতার জন্য নক্ষত্র এবং বড় বড় বিবর্তনের বিষয় নিয়ে গবেষণা মৌলিক। পর্যবেক্ষণ, তাত্ত্বিক বোধগম্যতা এবং অভ্যন্তর ভাগের কম্পিউটার সিমুলেশন থেকে তারকাগুলির জ্যোতিঃপদার্থ নির্ধারণ করা হয়েছে । চন্দ্র গঠন ধুলো এবং গ্যাসের ঘন অঞ্চলে ঘটে যা দৈত্য আণবিক মেঘ হিসাবে পরিচিত। যখন অস্থিতিশীল হয়ে যায় তখন ক্লাউড টুকরা মাধ্যাকর্ষণ প্রভাবের কারণে একটি প্রোটোস্টার গঠন করতে পারে। যথেষ্ট ঘন, এবং গরম কোর অঞ্চল নিউক্লিয়ার ফিউশন বৃদ্ধি করবে, এইভাবে একটি প্রধান-ধারার তারকা তৈরি করবে। প্রায় সব উপাদান যা হাইড্রোজেন এবং হিলিয়ামের তুলনায় ভারী তারা নক্ষত্রগুলির কোর অঞ্চলে তৈরি হয়েছিল । ফলপ্রসূ উপাদানের বৈশিষ্ট্য মূলত তার ভরের শুরুর উপর নির্ভর করে। আরও বৃহৎ তারকা যার উজ্জ্বলতা আরও ব্যাপক, এবং আরও দ্রুতভাবে তার হাইড্রোজেন জ্বালানি তার হিলিয়ামের মধ্যে সঞ্চালন করে। সময়ের সাথে সাথে এই হাইড্রোজেন জ্বালানি সম্পূর্ণ হিলিয়ামে রূপান্তরিত হয় এবং তারকাটি বিবর্তিত হতে শুরু করে। হিলিয়াম এর ফিউশনের জন্য উচ্চ কোর তাপমাত্রার প্রয়োজন। একটি তারকা খুব বেশি তাপমাত্রার সঙ্গে বাইরের স্তরে ধাক্কা দিবে তার ফলে এর কোরের ঘনত্ব বৃদ্ধি পায়। হিলিয়ামের জ্বালানীটি হ্রাসপ্রাপ্ত হওয়ার আগে বাইরের স্তরের দ্বারা গঠিত লাল দৈত্যটি একটি সংক্ষিপ্ত জীবনযাত্রা উপভোগ করে। খুব বড় বড় তারা বিবর্তনীয় পর্যায়েও আসতে পারে কারণ তারা ক্রমবর্ধমান ভারী উপাদানগুলিকে ফিউজ করে। সূর্যের চূড়ান্ত ভাগ্য তার ভরের উপর নির্ভর করে, সূর্যের মূল কোর সুপারনোভার চেয়ে আট গুন বড় হয় ; যখন ছোট তারা তাদের বাহ্যিক স্তরগুলিকে উড়িয়ে দেয় এবং একটি সাদা রঙের বামন তারার আকারে নিষ্ক্রিয় কোরের পিছনে চলে যায় । বাইরের স্তরের নিক্ষেপ একটি গ্রহের নিবোলা গঠন করে। একটি সুপারনোভার অবশিষ্টাংশ হল একটি ঘন নিউট্রন স্টার, অথবা, তারা কমপক্ষে তিন গুন বড় হতে পারে সূর্য থেকে, একে বলা কালপুরুষ। কাছাকাছি ঘূর্ণায়মান বাইনারি তারাগুলি আরও জটিল বিবর্তনীয় পথ অনুসরণ করতে পারে, যেমন একটি সাদা বামন সহচরের উপর ভর স্থানান্তর যা সম্ভাব্য একটি সুপারনোভা সৃষ্টি করতে পারে। গ্রহের নিবোলা এবং সুপারনোভা ফিউশন সংমিশ্রণে উৎপাদিত "ধাতু" বিতরণ করে; তাদের ছাড়া, সব নতুন তারা (এবং তাদের গ্রহের সিস্টেম) হাইড্রোজেন এবং হিলিয়াম থেকে গঠিত হবে। গ্যালাক্টিক জ্যোতির্বিদ্যা আমাদের সোলার সিস্টেম আকাশগঙ্গার মধ্যে আবর্তিত হয় , এই নিষ্ক্রান্ত সর্পিল ছায়াপথটি হল স্থানীয় গ্যালাক্সি গ্রুপের একটি বিশিষ্ট সদস্য। এটা হল পারস্পরিক মহাকর্ষীয় আকর্ষণ দ্বারা একসঙ্গে বিদ্যমান একটি ঘূর্ণন ভর,গ্যাস, ধুলো, তারা এবং অন্যান্য বস্তু। যেহেতু পৃথিবী বাইরের ধূলোযুক্ত বাহুর মধ্যে অবস্থিত, তাই আকাশগঙ্গার বেশির ভাগ অংশগুলি অদৃশ্য মনে হয়। আকাশগঙ্গার কেন্দ্রস্থলে বার-আকৃতির একটি বুজ অবস্থিত যাকে অতিবড় কালপুরুষ বলে মনে করা হয় । এটি চারটি প্রাথমিক বাহু দ্বারা আবৃত যা কেন্দ্র থেকে সর্পিল বলে মনে হয়। এটি হল সক্রিয় তারকা গঠনের একটি অঞ্চল যার রয়েছে অনেক ছোট আই তারাগুচছ। এই তারাগুচ্ছ ডিস্কটি আই ২ নক্ষত্রের একটি গোলকধাঁধার অন্ধকার দ্বারা ঘিরে রয়েছে, সেইসাথে গ্লবুলার ক্লাস্টার নামে পরিচিত নক্ষত্রগুলির অপেক্ষাকৃত ঘন ঘনত্ব লক্ষ করা যায়। আন্ততারাগুচ্ছের লাইনের মধ্যে স্পার্স ক্ষেত্রের একটি অঞ্চল রয়েছে। অপেক্ষাকৃত ঘন অঞ্চলে আণবিক হাইড্রোজেন এবং অন্যান্য উপাদানের আণবিক মেঘগুলি তারকা-গঠন অঞ্চল তৈরি করে। এটি কম্প্যাক্ট প্রাক-সৌর কোর বা গাঢ় নীহারিকা নিয়ে শুরু হয়, যা কম্প্যাক্ট প্রোটোস্টার গঠন (যা জিন্স দৈর্ঘ্য দ্বারা নির্ধারণ করা হয়) এবং পতনে মনোনিবেশ করে । বৃহত্তর তারাগুলি প্রদর্শিত হলে, তারা মেঘকে গ্লুইং গ্যাস এবং প্লাজমা এইচ ২ অঞ্চলে (আয়োনাইজড পারমাণবিক হাইড্রোজেন) রূপান্তরিত করে। এই নক্ষত্রগুলির কাছ থেকে উত্তেজনাপূর্ণ বায়ু এবং সুপারনোভা বিস্ফোরণগুলি মেঘকে ছড়িয়ে ছিটিয়ে দেয় এবং প্রায়ই তারা এক বা একাধিক তরুণ মুক্ত বড় ক্লাস্টারের পিছনে চলে যায়। এই ক্লাস্টারগুলি ধীরে ধীরে ছড়িয়ে পড়ে এবং তারাগুলি আকাশগঙ্গার সাথে যোগ দেয়। আকাশগঙ্গার এবং অন্যান্য ছায়াপথের বিষয়বস্তুর কিনেমেটিক অধ্যয়নে প্রমাণিত হয়েছে যে দৃশ্যমান বস্তুর চেয়ে আরও বেশি বস্তু আছে যা হিসাব করা অসম্ভব। অন্ধকার বিষয়টি হালো ভর আয়ত্তে প্রদর্শিত হয়, যদিও এই অন্ধকার বিষয়টির প্রকৃতি এখনও অনির্দিষ্ট রয়ে গেছে। এক্সট্রাগ্যালাক্টিক জ্যোতির্বিদ্যা আমাদের ছায়াপথের বাইরে বস্তুর অস্তিত্ব নিয়ে গবেষণা করা হল জ্যোতির্বিজ্ঞানের একটি শাখা যা মূলত গ্যালাক্সির গঠন এবং বিবর্তন , তাদের বর্ণনা পদ্ধতি(বর্ণনা) এবং শ্রেণীবদ্ধকরণ, বৃহত্তর স্কেলে সক্রিয় ছায়াপথ পর্যবেক্ষণ, ছায়াপথের গ্রুপ এবং ক্লাস্টারগুলির সাথে সম্পর্কিত। অবশেষে, মহাবিশ্বের বৃহৎ-স্তরের কাঠামোটি বোঝার জন্য এটি খুবি গুরুত্বপূর্ণ। সর্বাধিক ছায়াপথগুলি স্বতন্ত্র আকারে সংগঠিত হয় যা শ্রেণীবদ্ধকরণ স্কিমের জন্য অনুমতি দেয়। তারা সাধারণত সর্পিল, উপবৃত্তাকার এবং অনিয়মিত ছায়াপথগুলিতে বিভক্ত। নামটি নির্দেশ করে উপবৃত্তাকার ছায়াপথের একটি ক্রস বিভাগীয় উপবৃত্তাকার আকৃতি রয়েছে। কোন প্রারম্ভিক দিকবিন্যাস ছাড়াই নক্ষত্রপুঞ্জ কক্ষপথে বরাবর পরিভ্রমণ করে। এই ছায়াপথগুলি অল্প বা কোন আন্তঃধরীয় ধূলিকণা ছাড়া, কয়েকটি তারকা গঠনকারী অঞ্চল এবং সাধারণত পুরনো তারা নিয়ে গঠিত। উপবৃত্তাকার ছায়াপথগুলিকে সাধারণত গ্যালাকটিক ক্লাস্টারের মূল অংশে পাওয়া যায় এবং তারা বৃহৎ ছায়াপথগুলির মাধ্যমে সংযুক্ত হয়ে থাকতে পারে। সর্পিল ছায়াপথটি সংগঠিত হয় একটি ফ্ল্যাট, ঘূর্ণায়মান ডিস্ক, সাধারণত একটি বিশিষ্ট বুজ বা কেন্দ্রের বার নিয়ে এবং পিছনে তার বাহ্যিক উজ্জ্বল বাহু প্রদর্শন করে । বাহুগুলি হল স্টার গঠনের ধূলিমলিন অঞ্চল যার মধ্যে বিশাল নক্ষত্ররা একটি নীল রং তৈরি করে। স্পাইরাল ছায়াপথ সাধারণত হালো আকৃতির পুরনো নক্ষত্রপুঞ্জ দ্বারা ঘিরে থাকে। আকাশগঙ্গা এবং আমাদের নিকটবর্তী ছায়াপথের প্রতিবেশী অ্যান্ড্রোমিডা গ্যালাক্সি উভয়ই সর্পিল ছায়াপথ। অনিয়মিত ছায়াপথের চেহারা বিশৃঙ্খল হয় এবং তারা সর্পিল বা উপবৃত্তাকার হয় না। সমস্ত ছায়াপথের প্রায় এক চতুর্থাংশ অনিয়মিত, এবং ছায়াপথের অদ্ভুত আকৃতি মহাকর্ষীয় মিথস্ক্রিয়ার ফলে হতে পারে। সক্রিয় ছায়াপথ হল একটি গঠন যা এর নক্ষত্র, ধূলিকণা এবং গ্যাস ব্যতীত অন্য উৎস থেকে তার শক্তির একটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ নির্গত করে। এটি মূলত একটি কম্প্যাক্ট অঞ্চলের দ্বারা পরিচালিত হয়, একে একটি অতি-বৃহদায়তন কালপুরুষ বলে মনে করা হয় যা ভেতরের অংশ থেকে বেরিয়ে আসা বিকিরণ নির্গত করে। রেডিও ছায়াপথ হল একটি সক্রিয় ছায়াপথ যা স্পেকট্রামের রেডিও অংশে খুব আলোকিত হয় এবং গ্যাসের বিশাল প্লাম বা লোবগুলি নির্গত করে। সক্রিয় ছায়াপথ ক্ষুদ্র ফ্রিকোয়েন্সি নির্গত করে এবং উচ্চ শক্তি বিকিরণ করে তাদের মধ্যে সেইফার্ট ছায়াপথ, কোয়াসার্স, এবং ব্লাজার অন্যতম । কোয়াসার্সগুলিকে জ্ঞাত মহাবিশ্বের সবচেয়ে সুদৃঢ় আলোকিত বস্তু বলে মনে করা হয়। দৈহিক/ভৌত সৃষ্টিতত্ত্ব সৃষ্টিতত্ত্ব(ইংরেজি ভাষায় Cosmology) (গ্রিক κόσμος (কোসোমস) থেকে "বিশ্ব, মহাবিশ্ব" এবং λόγος (লোগো) "শব্দ, অধ্যয়ন" বা আক্ষরিক অর্থে "যুক্তিবিজ্ঞান") মহাবিশ্ব বিশ্লেষণ হিসাবে বিবেচিত হতে পারে। মহাবিশ্বের বৃহৎ-স্কেল কাঠামো পর্যবেক্ষণ করে যা দৈহিক সৃষ্টিতত্ত্ব হিসাবে পরিচিত, এটি মহাজাগতিক গঠনের এবং বিবর্তনের একটি গভীর উপলব্ধি প্রদান করেছে। আধুনিক কসমোলজির মূল ভিত্তি হল বিগ ব্যাং তত্ত্ব যা খুব ভালোভাবে স্বীকৃত , যেখানে আমাদের মহাবিশ্ব এক সময়ে এক বিন্দু থেকে শুরু হয়েছিল এবং তারপরে ১৩.৮ বিলিয়ন বছর ধরে প্রসারিত হয়ে এর বর্তমান অবস্থায় পৌঁছেছে । ১৯৬৫ সালে মাইক্রোওয়েভ ব্যাকগ্রাউন্ড রেডিয়েশন আবিষ্কারের পরে বিগ ব্যাং এর ধারণাটি খুঁজে পাওয়া যায়। এই সম্প্রসারণের সময় মহাবিশ্বকে বিভিন্ন বিবর্তনমূলক পর্যায়ের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছে। খুব প্রারম্ভিক মুহূর্তে এটি তাত্ত্বিকভাবে মেনে নেয়া হয় যে মহাবিশ্ব খুব দ্রুত মহাজাগতিক মুদ্রাস্ফীতির সম্মুখীন হয়েছিল, যা শুরু হওয়া অবস্থার সমন্বয় সাধন করেছিল বলে ধারণা করা হয়। তারপরে, নিউক্লিওসিনথেসিস প্রথম বিশ্বজগতের মৌলিক প্রাচুর্য উৎপন্ন করেছিল। প্রথম নিরপেক্ষ পরমাণু আদিম আয়নগুলির সমুদ্র থেকে গঠিত হয়েছিল, তখন মহাশূন্য বিকিরণের জন্য স্বচ্ছ হয়ে গিয়েছিল, যাকে আজকাল মাইক্রোওয়েভ পটভূমি বিকিরণ হিসাবে দেখা হয়। ক্রমবর্ধমান ইউনিভার্স তারপর অত্যাবশ্যক সোর শক্তির উৎস অভাবের কারণে একটি অন্ধকার যুগের মধ্য দিয়ে যেতে হয়েছিল। বস্তুর একটি হায়ারারকিকাল গঠন শুরু হয়েছিল মহাশূন্যের গণ ঘনত্বের মিনিট বৈচিত্র্য থেকে। ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে বস্তু জমা হয়েছিল , গ্যাসের মেঘ তৈরি হচ্ছিল এবং নিকটতম নক্ষত্রগুলি যা তৃতীয় নক্ষত্রমণ্ডলি হিসাবে পরিচিত । এই বৃহৎ নক্ষত্রগুলি পুনরাবৃত্তি প্রক্রিয়ার সূত্রপাত করে এবং প্রাথমিক মহাবিশ্ব অনেকগুলি ভারী উপাদানের সৃষ্টি করেছে বলে বিশ্বাস করা হয়, যা পারমাণবিক ক্ষয় দ্বারা হালকা উপাদান তৈরি করে এবং নিউক্লিওসিনথেসিসের চক্রকে আরও দীর্ঘায়িত করতে পথ তৈরি করে দেয়। মহাকর্ষীয় সমষ্টিগুলিকে ফিলামেন্টে ক্লাস্টার করে যার মধ্যে একটি ফাঁক রেখে দেয় । ধীরে ধীরে গ্যাস এবং ধূলিকণা সংস্থাগুলির মধ্যে প্রথম আদিম ছায়াপথ গঠন করা হয়। সময়ের সাথে সাথে এইগুলি আরও বেশি বস্তুকে টানে এবং প্রায়ই গ্যালাক্সির গোষ্ঠী এবং ক্লাস্টারগুলিতে সংগঠিত হয়েছিল, তারপর বৃহত্তর স্কেলে সুপারক্লাস্টারগুলিতে রূপান্তরিত হয়েছিল । মহাবিশ্বের মৌলিক কাঠামো মূলত অন্ধকার বিষয় এবং অন্ধকার শক্তির অস্তিত্বের উপর ভিত্তি করে গড়ে ওঠে । এই মহাবিশ্বের ৯৬% ভর প্রভাবশালী উপাদান দ্বারা গঠিত হয়েছিল বলে মনে করা হয়। এই কারণে এই উপাদানগুলির সাংগঠনিক বৈশিষ্ট্য বুঝতে অনেক প্রচেষ্টা ব্যয় করা হচ্ছে। আন্তঃশিক্ষামূলক অধ্যয়ন জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং জ্যোতিঃপদার্থ অন্যান্য প্রধান বৈজ্ঞানিক ক্ষেত্রগুলির সাথে উল্লেখযোগ্য আন্তঃশিক্ষার সংযোগ তৈরি করেছে। প্রত্নতাত্ত্বিক জ্যোতির্বিজ্ঞান হল প্রাচীন বা ঐতিহ্যগত জ্যোতির্বিজ্ঞানের অধ্যয়ন যা তাদের সাংস্কৃতিক প্রেক্ষাপটে প্রত্নতাত্ত্বিক ও নৃতাত্ত্বিক প্রমাণ ব্যবহার করে। জ্যোতির্জীববিজ্ঞান হল ইউনিভার্সের জৈবিক পদ্ধতির আবির্ভাব এবং বিবর্তন নিয়ে গবেষণা সংক্রান্ত বিদ্যা যা অস্থায়ী জীবনযাপনের সম্ভাবনা সম্পর্কে বিশেষ জোর দিয়ে। জ্যোতিঃপরিসংখ্যান হল জ্যোতিঃপদার্থবিদ্যার পরিসংখ্যানগত প্রয়োগ যা পর্যবেক্ষণ মহাকাশবিজ্ঞান সংক্রান্ত বিশাল পরিমাণ তথ্য বিশ্লেষণ করে । মহাশূন্যে প্রাপ্ত রাসায়নিক উপাদান তাদের গঠন, মিথস্ক্রিয়া এবং ধ্বংস সহ যে বিষয়ে গবেষণা করা হয় তাকে জ্যোতিঃরসায়ন বলা হয়। এই পদার্থগুলো সাধারণত আণবিক মেঘে পাওয়া যায়, যদিও তারা কম তাপমাত্রার নক্ষত্র, বাদামী ড্যাফোর্ড এবং গ্রহগুলিতেও পাওয়া যেতে পারে। কসমোকেমিস্ট্রি হল সৌরজগতের মধ্যে পাওয়া রাসায়নিকের অধ্যয়ন সংক্রান্ত বিদ্যা যার মধ্যে রয়েছে উপাদানের উৎস এবং আইসোটোপ অনুপাতের বৈচিত্র্য। এই ক্ষেত্রগুলি উভয় জ্যোতির্বিদ্যা এবং রসায়ন বিষয়গুলির একটি ওভারল্যাপ হিসাবে প্রতিনিধিত্ব করে। "ফরেনসিক জ্যোতির্বিজ্ঞান" পরিশেষে, জ্যোতির্বিজ্ঞানের পদ্ধতিগুলি আইন ও ইতিহাসের সমস্যার সমাধান করার জন্য ব্যবহার করা হয়েছে। পরিসর জ্যোতিঃপদার্থবিজ্ঞানের যুগোপযোগী চর্চার ফলে জ্যোতির্বিজ্ঞানের পরিসর বিংশ শতাব্দীতে ব্যাপক প্রসারিত হয়েছে। মূলত বিংশ শতাব্দীকেই জ্যোতির্বিজ্ঞানের সূচনা, বিকাশ এবং পরিপক্বতার যুগ বলে অভিহিত করা চলে। তার উপর পারমাণবিক বিক্রিয়ার মৌলিক বৈশিষ্ট্যসমূহ আবিষ্কৃত হওয়ার ফলে বিভিন্ন নক্ষত্রের অভ্যন্তরে কীভাবে শক্তি উৎপন্ন হচ্ছে তার স্বরূপ বোঝা গেছে। এর অব্যবহিত ফল হিসেবেই মহাবিশ্বের শক্তির উৎস সম্বন্ধে বিস্তারিত গবেষণা করা সম্ভব হয়েছে এবং জন্ম হয়েছে বিশ্বতত্ত্বের (Cosmology)। বিশ্বতত্ত্বের মূল আলোচ্য বিষয় মহাবিশ্বের উৎপত্তি এবং বিবর্তন। এ সব কিছুর ফলেই আমরা আজ জানি যে, পৃথিবীতে প্রাপ্ত পরমাণুগুলো মহাবিশ্বের বিবর্তনের এমন একটি সময়ে সৃষ্টি হয়েছিল যখন ধূলিমেঘ ছাড়া আর কোন কিছুরই অস্তিত্ব ছিল না। আর সেই ধূলিমেঘের মধ্যে প্রথমে কেবল হাইড্রোজেনেরই অস্তিত্ব ছিল। এভাবেই এই বিজ্ঞান অনেকদূর এগিয়ে গেছে যা একই সাথে মানুষকে এগিয়ে রাখার ক্ষেত্রে সবচেয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে; কারণ জ্যোতির্বিজ্ঞানের মাধ্যমেই সবচেয়ে সফল ভবিষ্যদ্বাণী করা সম্ভব। তবে জ্যোতির্বিজ্ঞানের সর্বপ্রধান সীমাবদ্ধতা বা অন্য যাই বলা হোক না কেন তা হল এটি এখনও একটি খাঁটি পর্যবেক্ষণমূলক বিজ্ঞান। অনেক দূরবর্তী বস্তুসমূহ নিয়ে গবেষণা করতে হয় বিধায় এতে পরীক্ষণের সুযোগ খুবই সীমিত। তাছাড়া যে বস্তুসমূহ নিয়ে পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে হয় সেগুলোর তাপমাত্রা, চাপ বা রাসায়নিক গঠন সম্পর্কে কোনও তথ্যকেন্দ্রিক নিয়ন্ত্রণ থাকা সম্ভব নয়। তবে বর্তমান যুগে এই বিজ্ঞানের বেশ কয়েকটি উল্লেখযোগ্য পরীক্ষণ চালনা সম্ভব হয়েছে; যেমন: ভূপৃষ্ঠে পতিত উল্কাপিণ্ড, পাথর বা চাঁদ থেকে নিয়ে আসা মাটি নিয়ে বিস্তর গবেষণা সম্ভব হয়েছে। এর সাথে পৃথিবীর বায়ুমণ্ডলের স্ট্র্যাটোস্ফিয়ার স্তরে প্রাপ্ত ধূলিকণা নিয়ে গবেষণাও এর অন্তর্ভুক্ত। এভাবে জ্যোতির্বিদ্যা পর্যবেক্ষণ ক্ষেত্রেও প্রসিদ্ধি লাভ করছে। ভবিষ্যতে হয়তোবা ধূমকেতুর ধূলিকণা বা মঙ্গল গ্রহের মাটি নিয়ে মহাশূন্যযানে বসেই গবেষণা করা যাবে। তবে এসব গবেষণার বেশির ভাগই পৃথিবীকেন্দ্রিক। পর্যবেক্ষণকাজে বিজ্ঞানের অন্য শাখাসমূহের সাহায্য এখানে মুখ্য। সহযোগী শাখাসমূহের মধ্যে আছে পদার্থবিজ্ঞান, রসায়ন, অণুজীববিজ্ঞান, প্রত্নতত্ত্ব ইত্যাদি। আরও দেখুন তালিকা জ্যোতির্বিজ্ঞানের নিবন্ধসমূহের তালিকা :Category:প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞান :Category:জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক মানমন্দির :Category:জ্যোতির্বিজ্ঞান সংস্থা :Category:জ্যোতির্বিজ্ঞানের কালপঞ্জি প্রাসঙ্গিক নিবন্ধ জ্যোতিষ শাস্ত্র জ্যোতির্বিজ্ঞানী বিশ্বতত্ত্ব আন্তর্জাতিক জ্যোতির্বিজ্ঞান বর্ষ মহাশূন্য অভিযান মহাশূন্য বিজ্ঞান তথ্যসূত্র টীকা Unsöld, Albrecht; Baschek, Bodo (2001). Classical Astronomy and the Solar System - Introduction. p. 1. Jump up ^ Unsöld, Albrecht; Baschek, Bodo (2001). Classical Astronomy and the Solar System. pp. 6–9. Jump up ^ https://web.archive.org/web/20030602155203/http://www.sydneyobservatory.com.au/ Official Web Site of the Sydney Observatory Jump up ^ http://oaq.epn.edu.ec/ Official Web Site of one of the oldest Observatories in South America, the Quito Astronomical Observatory Jump up ^ Losev A., (2012), 'Astronomy' or 'astrology': a brief history of an apparent confusion, Journal of Astronomical History and Heritage, Vol. 15, No. 1, p. 42-46 . Jump up ^ Unsöld, Albrecht; Baschek, Bodo (2001). The New Cosmos: An Introduction to Astronomy and Astrophysics. Translated by Brewer, W.D. Berlin, New York: Springer. . ^ Jump up to: a b Scharringhausen, B. "Curious About Astronomy: What is the difference between astronomy and astrophysics?". Archived from the original on 9 June 2007. Retrieved 17 November 2016. ^ Jump up to: a b Odenwald, Sten. "Archive of Astronomy Questions and Answers: What is the difference between astronomy and astrophysics?". astronomycafe.net. The Astronomy Cafe. Archived from the original on 8 July 2007. Retrieved 20 June 2007. ^ Jump up to: a b "Penn State Erie-School of Science-Astronomy and Astrophysics". Archived from the original on 1 November 2007. Retrieved 20 June 2007. Jump up ^ "Merriam-Webster Online". Results for "astronomy". Archived from the original on 17 June 2007. Retrieved 20 June 2007. Jump up ^ "Merriam-Webster Online". Results for "astrophysics". Retrieved 20 June 2007. ^ Jump up to: a b c Shu, F. H. (1983). The Physical Universe. Mill Valley, California: University Science Books. . Jump up ^ Forbes, 1909 Jump up ^ DeWitt, Richard (2010). "The Ptolemaic System". Worldviews: An Introduction to the History and Philosophy of Science. Chichester, England: Wiley. p. 113. . Jump up ^ Aaboe, A. (1974). "Scientific Astronomy in Antiquity". Philosophical Transactions of the Royal Society. 276 (1257): 21–42. Bibcode:1974RSPTA.276...21A. JSTOR 74272. doi:10.1098/rsta.1974.0007. Jump up ^ "Eclipses and the Saros". NASA. Archived from the original on 30 October 2007. Retrieved 28 October 2007. Jump up ^ Krafft, Fritz (2009). "Astronomy". In Cancik, Hubert; Schneider, Helmuth. Brill's New Pauly. Jump up ^ Berrgren, J.L.; Nathan Sidoli (May 2007). "Aristarchus's On the Sizes and Distances of the Sun and the Moon: Greek and Arabic Texts". Archive for History of Exact Sciences. 61 (3): 213–254. doi:10.1007/s00407-006-0118-4. Jump up ^ "Hipparchus of Rhodes". School of Mathematics and Statistics, University of St Andrews, Scotland. Archived from the original on 23 October 2007. Retrieved 28 October 2007. Jump up ^ Thurston, H., Early Astronomy. Springer, 1996. p. 2 Jump up ^ Marchant, Jo (2006). "In search of lost time". Nature. 444 (7119): 534–8. Bibcode:2006Natur.444..534M. PMID 17136067. doi:10.1038/444534a. Jump up ^ Kennedy, Edward S. (1962). "Review: The Observatory in Islam and Its Place in the General History of the Observatory by Aydin Sayili". Isis. 53 (2): 237–239. doi:10.1086/349558. Jump up ^ Micheau, Francoise. Rashed, Roshdi; Morelon, Régis, eds. "The Scientific Institutions in the Medieval Near East". Encyclopedia of the History of Arabic Science. 3: 992–3. Jump up ^ Nas, Peter J (1993). Urban Symbolism. Brill Academic Publishers. p. 350. . Jump up ^ Kepple, George Robert; Glen W. Sanner (1998). The Night Sky Observer's Guide. 1. Willmann-Bell, Inc. p. 18. . ^ Jump up to: a b Berry, Arthur (1961). A Short History of Astronomy From Earliest Times Through the 19th Century. New York: Dover Publications, Inc. . Jump up ^ Hoskin, Michael, ed. (1999). The Cambridge Concise History of Astronomy. Cambridge University Press. . Jump up ^ McKissack, Pat; McKissack, Frederick (1995). The royal kingdoms of Ghana, Mali, and Songhay: life in medieval Africa. H. Holt. . Jump up ^ Clark, Stuart; Carrington, Damian (2002). "Eclipse brings claim of medieval African observatory". New Scientist. Retrieved 3 February 2010. Jump up ^ "Cosmic Africa explores Africa's astronomy". Science in Africa. Archived from the original on 3 December 2003. Retrieved 3 February 2002. Jump up ^ Holbrook, Jarita C.; Medupe, R. Thebe; Urama, Johnson O. (2008). African Cultural Astronomy. Springer. . Jump up ^ "Africans studied astronomy in medieval times". The Royal Society. 30 January 2006. Archived from the original on 9 June 2008. Retrieved 3 February 2010. Jump up ^ Stenger, Richard "Star sheds light on African 'Stonehenge'". CNN. 5 December 2002. Archived from the original on 12 May 2011.. CNN. 5 December 2002. Retrieved on 30 December 2011. Jump up ^ J. L. Heilbron, The Sun in the Church: Cathedrals as Solar Observatories (1999) p. 3 ^ Jump up to: a b Forbes, 1909, pp. 58–64 Jump up ^ Forbes, 1909, pp. 49–58 Jump up ^ Chambers, Robert (1864) Chambers Book of Days Jump up ^ Forbes, 1909, pp. 79–81 Jump up ^ Forbes, 1909, pp. 147–150 Jump up ^ Forbes, 1909, pp. 74–76 Jump up ^ Belkora, Leila (2003). Minding the heavens: the story of our discovery of the Milky Way. CRC Press. pp. 1–14. . Jump up ^ "Electromagnetic Spectrum". NASA. Archived from the original on 5 September 2006. Retrieved 17 November 2016. ^ Jump up to: a b c d e f g h i j k l m n Cox, A. N., ed. (2000). Allen's Astrophysical Quantities. New York: Springer-Verlag. p. 124. . Jump up ^ "In Search of Space". Picture of the Week. European Southern Observatory. Retrieved 5 August 2014. Jump up ^ "Wide-field Infrared Survey Explorer Mission". NASAUniversity of California, Berkeley. 30 September 2014. Retrieved 17 November 2016. Jump up ^ Majaess, D. (2013). Discovering protostars and their host clusters via WISE, ApSS, 344, 1 (VizieR catalog) Jump up ^ Staff (11 September 2003). "Why infrared astronomy is a hot topic". ESA. Retrieved 11 August 2008. Jump up ^ "Infrared Spectroscopy – An Overview". NASA California Institute of Technology. Retrieved 11 August 2008. ^ Jump up to: a b Moore, P. (1997). Philip's Atlas of the Universe. Great Britain: George Philis Limited. . Jump up ^ Penston, Margaret J. (14 August 2002). "The electromagnetic spectrum". Particle Physics and Astronomy Research Council. Archived from the original on 8 September 2012. Retrieved 17 November 2016. Jump up ^ Gaisser, Thomas K. (1990). Cosmic Rays and Particle Physics. Cambridge University Press. pp. 1–2. . Jump up ^ Abbott, Benjamin P.; et al. (LIGO Scientific Collaboration and Virgo Collaboration) (2016). "Observation of Gravitational Waves from a Binary Black Hole Merger". Phys. Rev. Lett. 116 (6): 061102. Bibcode:2016PhRvL.116f1102A. PMID 26918975. arXiv:1602.03837 Freely accessible. doi:10.1103/PhysRevLett.116.061102. Jump up ^ Tammann, G.A.; Thielemann, F.K.; Trautmann, D. (2003). "Opening new windows in observing the Universe". Europhysics News. Archived from the original on 6 September 2012. Retrieved 17 November 2016. Jump up ^ LIGO Scientific Collaboration and Virgo Collaboration; Abbott, B. P.; Abbott, R.; Abbott, T. D.; Abernathy, M. R.; Acernese, F.; Ackley, K.; Adams, C.; Adams, T. (2016-06-15). "GW151226: Observation of Gravitational Waves from a 22-Solar-Mass Binary Black Hole Coalescence". Physical Review Letters. 116 (24): 241103. PMID 27367379. doi:10.1103/PhysRevLett.116.241103. Jump up ^ "Planning for a bright tomorrow: Prospects for gravitational-wave astronomy with Advanced LIGO and Advanced Virgo". LIGO Scientific Collaboration. Retrieved 31 December 2015. Jump up ^ Xing, Zhizhong; Zhou, Shun (2011). Neutrinos in Particle Physics, Astronomy and Cosmology. Springer. p. 313. . Extract of page 313 Jump up ^ Calvert, James B. (28 March 2003). "Celestial Mechanics". University of Denver. Archived from the original on 7 September 2006. Retrieved 21 August 2006. Jump up ^ "Hall of Precision Astrometry". University of Virginia Department of Astronomy. Archived from the original on 26 August 2006. Retrieved 17 November 2016. Jump up ^ Wolszczan, A.; Frail, D. A. (1992). "A planetary system around the millisecond pulsar PSR1257+12". Nature. 355 (6356): 145–147. Bibcode:1992Natur.355..145W. doi:10.1038/355145a0. Jump up ^ Roth, H. (1932). "A Slowly Contracting or Expanding Fluid Sphere and its Stability". Physical Review. 39 (3): 525–529. Bibcode:1932PhRv...39..525R. doi:10.1103/PhysRev.39.525. Jump up ^ Eddington, A.S. (1926). Internal Constitution of the Stars. Cambridge University Press. . Jump up ^ "Dark matter". NASA. 2010. Archived from the original on 30 October 2009. Retrieved 2 November 2009. third paragraph, "There is currently much ongoing research by scientists attempting to discover exactly what this dark matter is" ^ Jump up to: a b Johansson, Sverker (27 July 2003). "The Solar FAQ". Talk.Origins Archive. Archived from the original on 7 September 2006. Retrieved 11 August 2006. Jump up ^ Lerner, K. Lee; Lerner, Brenda Wilmoth (2006). "Environmental issues : essential primary sources". Thomson Gale. Archived from the original on 10 July 2012. Retrieved 17 November 2016. Jump up ^ Pogge, Richard W. (1997). "The Once & Future Sun". New Vistas in Astronomy. Archived from the original (lecture notes) on 27 May 2005. Retrieved 3 February 2010. Jump up ^ Stern, D. P.; Peredo, M. (28 September 2004). "The Exploration of the Earth's Magnetosphere". NASA. Archived from the original on 24 August 2006. Retrieved 22 August 2006. Jump up ^ Bell III, J. F.; Campbell, B. A.; Robinson, M. S. (2004). Remote Sensing for the Earth Sciences: Manual of Remote Sensing (3rd ed.). John Wiley & Sons. Archived from the original on 11 August 2006. Retrieved 17 November 2016. Jump up ^ Grayzeck, E.; Williams, D. R. (11 May 2006). "Lunar and Planetary Science". NASA. Archived from the original on 20 August 2006. Retrieved 21 August 2006. Jump up ^ Montmerle, Thierry; Augereau, Jean-Charles; Chaussidon, Marc; et al. (2006). "Solar System Formation and Early Evolution: the First 100 Million Years". Earth, Moon, and Planets. Springer. 98 (1–4): 39–95. Bibcode:2006EM&P...98...39M. doi:10.1007/s11038-006-9087-5. Jump up ^ Montmerle, 2006, pp. 87–90 Jump up ^ Beatty, J.K.; Petersen, C.C.; Chaikin, A., eds. (1999). The New Solar System. Cambridge press. p. 70edition = 4th. . ^ Jump up to: a b Harpaz, 1994, pp. 7–18 ^ Jump up to: a b Smith, Michael David (2004). "Cloud formation, Evolution and Destruction". The Origin of Stars. Imperial College Press. pp. 53–86. . Jump up ^ Harpaz, 1994 Jump up ^ Harpaz, 1994, pp. 173–178 Jump up ^ Harpaz, 1994, pp. 111–118 Jump up ^ Audouze, Jean; Israel, Guy, eds. (1994). The Cambridge Atlas of Astronomy (3rd ed.). Cambridge University Press. . Jump up ^ Harpaz, 1994, pp. 189–210 Jump up ^ Harpaz, 1994, pp. 245–256 Jump up ^ Ott, Thomas (24 August 2006). "The Galactic Centre". Max-Planck-Institut für extraterrestrische Physik. Archived from the original on 4 September 2006. Retrieved 17 November 2016. Jump up ^ Smith, Michael David (2004). "Massive stars". The Origin of Stars. Imperial College Press. pp. 185–199. . Jump up ^ Van den Bergh, Sidney (1999). "The Early History of Dark Matter". Publications of the Astronomical Society of the Pacific. 111 (760): 657–660. Bibcode:1999PASP..111..657V. arXiv:astro-ph/9904251 Freely accessible. doi:10.1086/316369. Jump up ^ Keel, Bill (1 August 2006). "Galaxy Classification". University of Alabama. Archived from the original on 1 September 2006. Retrieved 8 September 2006. Jump up ^ "Active Galaxies and Quasars". NASA. Archived from the original on 31 August 2006. Retrieved 17 November 2016. Jump up ^ Zeilik, Michael (2002). Astronomy: The Evolving Universe (8th ed.). Wiley. . Jump up ^ "Cosmic Detectives". The European Space Agency (ESA). 2013-04-02. Retrieved 2013-04-15. ^ Jump up to: a b c Dodelson, Scott (2003). Modern cosmology. Academic Press. pp. 1–22. . Jump up ^ Hinshaw, Gary (13 July 2006). "Cosmology 101: The Study of the Universe". NASA WMAP. Archived from the original on 13 August 2006. Retrieved 10 August 2006. Jump up ^ Dodelson, 2003, pp. 216–261 Jump up ^ "Galaxy Clusters and Large-Scale Structure". University of Cambridge. Archived from the original on 10 October 2006. Retrieved 8 September 2006. Jump up ^ Preuss, Paul. "Dark Energy Fills the Cosmos". U.S. Department of Energy, Berkeley Lab. Archived from the original on 11 August 2006. Retrieved 8 September 2006. Jump up ^ Mims III, Forrest M. (1999). "Amateur Science—Strong Tradition, Bright Future". Science. 284 (5411): 55–56. Bibcode:1999Sci...284...55M. doi:10.1126/science.284.5411.55. Astronomy has traditionally been among the most fertile fields for serious amateurs [...] Jump up ^ "The American Meteor Society". Archived from the original on 22 August 2006. Retrieved 24 August 2006. Jump up ^ Lodriguss, Jerry. "Catching the Light: Astrophotography". Archived from the original on 1 September 2006. Retrieved 24 August 2006. Jump up ^ Ghigo, F. (7 February 2006). "Karl Jansky and the Discovery of Cosmic Radio Waves". National Radio Astronomy Observatory. Archived from the original on 31 August 2006. Retrieved 24 August 2006. Jump up ^ "Cambridge Amateur Radio Astronomers". Retrieved 24 August 2006. Jump up ^ "The International Occultation Timing Association". Archived from the original on 21 August 2006. Retrieved 24 August 2006. Jump up ^ "Edgar Wilson Award". IAU Central Bureau for Astronomical Telegrams. Archived from the original on 24 October 2010. Retrieved 24 October 2010. Jump up ^ "American Association of Variable Star Observers". AAVSO. Archived from the original on 2 February 2010. Retrieved 3 February 2010. Jump up ^ Kroupa, Pavel (2002). "The Initial Mass Function of Stars: Evidence for Uniformity in Variable Systems". Science. 295 (5552): 82–91. Bibcode:2002Sci...295...82K. PMID 11778039. arXiv:astro-ph/0201098 Freely accessible. doi:10.1126/science.1067524. Jump up ^ "Rare Earth: Complex Life Elsewhere in the Universe?". Astrobiology Magazine. Archived from the original on 28 June 2011. Retrieved 12 August 2006. Jump up ^ Sagan, Carl. "The Quest for Extraterrestrial Intelligence". Cosmic Search Magazine. Archived from the original on 18 August 2006. Retrieved 12 August 2006. Jump up ^ "11 Physics Questions for the New Century". Pacific Northwest National Laboratory. Archived from the original on 3 February 2006. Retrieved 12 August 2006. Jump up ^ Hinshaw, Gary (15 December 2005). "What is the Ultimate Fate of the Universe?". NASA WMAP. Archived from the original on 29 May 2007. Retrieved 28 May 2007. Jump up ^ "FAQ - How did galaxies form?". NASA. Retrieved July 28, 2015. Jump up ^ "Supermassive Black Hole". Swinburne University. Retrieved July 28, 2015. Jump up ^ Hillas, A. M. (September 1984). "The Origin of Ultra-High-Energy Cosmic Rays". Annual Review of Astronomy and Astrophysics. 22: 425–444. doi:10.1146/annurev.aa.22.090184.002233. This poses a challenge to these models, because [...] Jump up ^ Howk, J. Christopher; Lehner, Nicolas; Fields, Brian D.; Mathews, Grant J. (6 September 2012). "Observation of interstellar lithium in the low-metallicity Small Magellanic Cloud". Nature. 489 (7414): 121–123. ISSN 0028-0836. PMID 22955622. doi:10.1038/nature11407. Jump up ^ Orwig, Jessica (15 December 2014). "What Happens When You Enter A Black Hole?". Business Insider International. Retrieved 17 November 2016. বহিঃসংযোগ International Year of Astronomy 2009 IYA2009 Main website Cosmic Journey: A History of Scientific Cosmology from the American Institute of Physics Astronomy Picture of the Day Sky & Telescope publishers Southern Hemisphere Astronomy Astronomy Magazine cartomanzia University of Milan research Search Engine for Astronomy Universe Today for astronomy and space-related news Hubblesite.org - home of NASA's Hubble Space Telescope The New Student's Reference Work/Astronomy জ্যোতির্বিজ্ঞান মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Astronomy
Astronomy
Astronomy is a natural science that studies celestial objects and the phenomena that occur in the cosmos. It uses mathematics, physics, and chemistry in order to explain their origin and their overall evolution. Objects of interest include planets, moons, stars, nebulae, galaxies, meteoroids, asteroids, and comets. Relevant phenomena include supernova explosions, gamma ray bursts, quasars, blazars, pulsars, and cosmic microwave background radiation. More generally, astronomy studies everything that originates beyond Earth's atmosphere. Cosmology is a branch of astronomy that studies the universe as a whole. Astronomy is one of the oldest natural sciences. The early civilizations in recorded history made methodical observations of the night sky. These include the Egyptians, Babylonians, Greeks, Indians, Chinese, Maya, and many ancient indigenous peoples of the Americas. In the past, astronomy included disciplines as diverse as astrometry, celestial navigation, observational astronomy, and the making of calendars. Professional astronomy is split into observational and theoretical branches. Observational astronomy is focused on acquiring data from observations of astronomical objects. This data is then analyzed using basic principles of physics. Theoretical astronomy is oriented toward the development of computer or analytical models to describe astronomical objects and phenomena. These two fields complement each other. Theoretical astronomy seeks to explain observational results and observations are used to confirm theoretical results. Astronomy is one of the few sciences in which amateurs play an active role. This is especially true for the discovery and observation of transient events. Amateur astronomers have helped with many important discoveries, such as finding new comets.
1258
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%A8
রসায়ন
রসায়ন পদার্থের উপাদান, কাঠামো, ধর্ম ও পারস্পরিক ক্রিয়া-বিক্রিয়া সংক্রান্ত বিজ্ঞান। রসায়নবিদেরা মনে করেন বিশ্বের যাবতীয় বস্তু পরমাণু দিয়ে গঠিত। দুই বা ততোধিক পরমাণু রাসায়নিক বন্ধন দ্বারা আবদ্ধ হয়ে অণুর সৃষ্টি করে। এক বা একাধিক ইলেকট্রন পরমাণু বা অণু থেকে সরিয়ে নিলে বা যোগ করলে আধানযুক্ত কণা তথা আয়ন সৃষ্টি হয়। ধনাত্মক আয়ন ও ঋণাত্মক আয়নের সংযোগে সৃষ্টি হয় আধান-নিরপেক্ষ লবণ (মূলত এটি ক্লোরিন বা সালফেটের যৌগ)। রসায়নবিদেরা আণবিক ও পারমাণবিক স্তরে পদার্থ সম্পর্কে তাদের জ্ঞান দিয়ে কীভাবে বিভিন্ন ধরনের পদার্থ একে অপরের সাথে ক্রিয়া করে এবং এগুলি কীভাবে বিভিন্ন অবস্থায় রূপান্তরিত হয়, তা ব্যাখ্যা করতে পারেন। রসায়নবিদেরা পদার্থের পরিবর্তন সাধন করতে পারেন ও নতুন নতুন যৌগ সৃষ্টি করতে পারেন যাদের মধ্যে আছে ঔষধ, বিস্ফোরক, প্রসাধনী ও খাদ্য। রাসায়নিক সংশ্লেষণ কাজে লাগিয়ে বিভিন্ন শিল্পে বিপুল পরিমাণ রাসায়নিক দ্রব্য উৎপাদন করা হয়। পদার্থের প্রকারভেদ কিংবা গবেষণার সাদৃশ্য বিবেচনা করে রসায়নের বিভিন্ন শাখা প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। রসায়নের প্রধান শাখাগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অজৈব রসায়ন অর্থাৎ রসায়নের যে শাখায় অজৈব যৌগ নিয়ে আলোচনা করা হয়, জৈব রসায়ন বা যে শাখায় জৈব যৌগ নিয়ে আলোচনা করা হয়, প্রাণরসায়ন, রসায়নের যে শাখায় জীবদেহের রাসায়নিক পদার্থ নিয়ে আলোচনা করা হয়, ভৌত রসায়ন, এই শাখায় আণবিক পর্যায়ে শক্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত রাসায়নিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করা হয়, বিশ্লেষণী রসায়ন, এক্ষেত্রে পদার্থের বিশ্লেষণের মাধ্যমে তাদের গঠন, সংযুক্তি ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হয়। সাম্প্রতিক কালে রসায়নের আরও অনেক নতুন শাখার উদ্ভব হয়েছে, যেমন- স্নায়ু রসায়ন। স্নায়ুতন্ত্রের রাসায়নিক গঠন নিয়ে এই শাখায় আলোচনা করা হয়। তত্ত্ব ল্যাবরেটরি, ইন্সটিটিউট অফ বায়োকেমিস্ট্রি, ইউনিভার্সিটি অফ কনজ এই সকল প্রতিষ্ঠানগুলোতে ঐতিহ্যবাহী রসায়ন চর্চা শুরু হয়। এখানে মৌলিক উপাদান, পরমাণু, পদার্থ, গলন, ক্রিস্টাল ও পদার্থ একত্র করা, কঠিন পদার্থ, তরল, বায়বীয় পদার্থ, যৌগ তৈরির নীতি, কথাবার্তা, বিক্রিয়া এবং রূপান্তর ইত্যাদি নিয়ে গবেষণা করা হয়। ইতিহাস রসায়নের ইতিহাস একটি অনেক বড় বিষয়।এটি প্রাচীন ও প্রধান বিজ্ঞানগুলোর অন্যতম। বলা চলে আগুন আবিষ্কারের পর থেকেই মানব সভ্যতার হাত ধরে এগিয়ে চলেছে রসায়ন। ভারতবর্ষে প্রায় ৫০০০ বছর পূর্বেই কাপড়কে আকর্ষণীয় করে তুলতে রঙের ব্যবহার শুরু হয়েছিল। রসায়ন '''চর্চায় প্রাচীন মিশরীয় সভ্যতার অবদান অনেক। প্রাচীন ও মধ্যযুগীয় রসায়ন চর্চা আল-কেমি (Alchemy) নামে পরিচিত। আল-কেমি আরবি আল-কিমিয়া থেকে উদ্ভূত, যা দিয়ে মিশরীয় সভ্যতাকে বুঝানো হতো। জাবির ইবন হাইয়ানকে রসায়ন শাস্ত্রের ও লাভোয়াজিয়েকেকে আধুনিক রসায়ন শাস্ত্রের জনক বলা হয়ে থাকে। মধ্যযুগে ধাতুকে সোনায় পরিণত করতে পারার পদ্ধতি আবিষ্কারের প্রচেষ্টায় শুরু হয় আলকেমি বিদ্যা, যা লাভোয়াজিয়ে, মেন্ডেলিফদের হাতে পূর্ণতা লাভ করেছে। রসায়ন শব্দের উৎপত্তি রসায়ন শব্দের ইংরেজি Chemistry (কেমিস্ট্রি)। মধ্যযুগে পরশ পাথরের সন্ধানে পরীক্ষারত মুসলিম বিজ্ঞানীরা একটি শাস্ত্র বা পদ্ধতি আবিষ্কার করেন। এটাকে তারা বলতেন আলকামিস্তা বা আলকেমি। আলকেমি এসেছে আরবী শব্দ আল-কিমিয়া থেকে। আল-কিমিয়া শব্দটি এসেছে 'কিমি' থেকে। কিমি থেকেই chemistry শব্দের উৎপত্তি। আলকেমি আল অর্থ দি(The), এবং কেমি বা কিমি অর্থ ব্লাক সয়েল বা কালো মাটি। এই কালো মাটি আসলে মিশরের নীল নদের তীরের মাটি। প্রাচীন মিশরকে রসায়নের জন্মক্ষেত্র বলা যায়। কারণ, মিশরীয়রা সভ্যতার আদি লগ্নে যে মমি তৈরি করতো তাতেই তারা নানান রকমের রাসায়নিক ব্যবহার করতো। প্রাচীন গ্রীসেও রসায়নের চর্চা শুরু হয়েছে সুপ্রাচীনকাল থেকেই। তারা চিন্তা করতো এ্যালিক্সির বা জীবন সঞ্জিবনীর কীভাবে তৈরি করা যায়! কারণ, মানুষ চিরদিন বেঁচে থাকতে চায় অমর হতে চায়। ভারতীয় উপমহাদেশের ঋষিরাও চাইতেন তেমন কিছু তৈরি করার। তারা একে বলতেন পরশ পাথর! গ্রিসদের এই চিন্তা ভাবনা ও কাজের সাথে পরিচিত ছিলেন জাবির ইব্নে হাইয়ান। তাঁর পিতা ইবনে হাইয়ানও একজন গুপ্তবিদ্যাচর্চাকারী ছিলেন। প্রাচীনকালে রসায়ন গুপ্ত বিদ্যা বলে পরিচিত ছিলো। কারণ রসায়নবিদরা লোক চক্ষুর অন্তরালে তাদের পরীক্ষা-নীরিক্ষা করতেন। কারণ সাধারণ মানুষের কৌতুুহল বেশি থাকে এবং তারা কাজে বাঁধা সৃষ্টি করতে তৎপর থাকে। পরবর্তী সময়ে জাবির ইবনে হাইয়ান তাঁর নিজ বাসভূমি আরবীয় অঞ্চলে ফিরে আসেন এবং রসায়ন শাস্ত্রের উপর ১০৮ খানা গ্রন্থ লেখেন। তাঁর এই মহামূল্য গ্রন্থগুলো রসায়ন গবেষণায় সহায়ক ভূমিকা রেখেছে। তাকে প্রাচীন রসায়নের জনক বলে অভিহিত করা হয়। মৌলিক ধারণা আমরা জানি যে, যার ভর আছে, কোন স্থান দখল করে অবস্থান করে এবং যা স্থিতিশীল বা গতিশীল অবস্থার বাধা প্রদান করে, তাকে পদার্থ বলে। পদার্থের মধ্যে অণু থাকে যা আবার পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত। পরমাণু সমূহ গঠিত হয় ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন এর সমন্বয়ে। এসব ইলেকট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন পদার্থের অনুর সাথে কীভাবে সম্পর্কযুক্ত থাকে এবং এদের বিক্রিয়ার সময় এরা কি ধরনের আচরণ করে সেসব নিয়ে আলোচনা করা হয় রসায়নে। সংজ্ঞাসমূহ রসায়ন শাস্ত্রে অনেক গুলো মৌলিক বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে। প্রতিটি বিষয়ের জন্য আলাদা আলাদা সংজ্ঞা দেয়া হয়েছে পরমাণু মৌলিক পদার্থের ক্ষুদ্রতম কণা যা ঐ পদার্থের বৈশিষ্ট্য রক্ষা করে। যাকে বিশ্লেষিত করলে আরো ক্ষুদ্রতম কণা ইলেক্ট্রন, প্রোটন ও নিউট্রন পাওয়া যায়। পরমাণুকে দুটি ভিন্ন অঞ্চলে ভাগ করা যায়। একটিকে কেন্দ্র বলা হয়- যে অংশে পরমাণুর সকল ভর ও ধনাত্বক চার্জ পুঞ্জীভূত থাকে। অর্থাৎ নিরপেক্ষ নিউট্রন ও ধনাত্বক প্রোটন একত্রে কেন্দ্র বা নিউক্লিয়াসে থাকে আর দ্বিতীয়টিকে বলা হয় বহিঃঅঞ্চল- যে অংশে নির্দিষ্ট শক্তির কতক শক্তিস্তর থাকে আর ঐ শক্তিস্তরে নির্দিষ্ট শক্তির ঋণাত্বক চার্জ যুক্ত ইলেক্ট্রন পরিক্রমণরত অবস্থায় থাকে। পদার্থ যার ভর আছে, কোনো স্থান দখল করে অবস্থান করে এবং যা স্থিতিশীল বা গতিশীল অবস্থার বাধা প্রদান করে, তাকে পদার্থ বলে। পৃথিবীর সমস্ত পদার্থকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়ে থাকে। যথা: কঠিন, তরল ও বায়বীয়। এছাড়াও পদার্থের আরেকটি অবস্থাও হিসাব করা হয়, যাকে প্লাজমা বলে। এটিকে উচ্চ তাপমাত্রায় আয়নিত গ্যাস বলা হয়। যৌগ একাধিক মৌলের সমন্বয়ে গঠিত নতুন পদার্থকে যৌগ বলে। যেমন: সোডিয়াম ক্লোরাইড, কার্বন‌ ডাই অক্সাইড, সালফিউরিক এসিড ইত্যাদি। বস্তু যেকোন পদার্থের নির্দিষ্ট একটা অংশকে বস্তু বলে। যেমনঃ মৌল, এক অণু বিশিষ্ট যৌগ। অর্থাৎ হাইড্রোজেন, অক্সিজেন, পানি ইত্যাদি। অণু দুই বা ততোধিক পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত ক্ষুদ্র কণাকে বলা হয় অণু। যেমন: হাইড্রোজেনের দুটি পরমাণু পরস্পর যুক্ত হয়ে অণু গঠন করে। হাইড্রোজেনের পরমাণু H এবং হাইড্রোজেনের অণু H2। মোল কোনো পদার্থের পারমাণবিক ভর বা আণবিক ভরকে গ্রাম এককে প্রকাশ করলে যে পরিমাণ পাওয়া যায়, তাকে ঐ পদার্থের এক মোল বলে। ১ mole=৬.০২২x১০ ২৩ টি অণু/পরমাণু/আয়ন। এই সংখ্যাটিকে অ্যাভোগেড্রোর সংখ্যা বলা হয়। কোন পদার্থের যে পরিমাণের মধ্যে অ্যাভোগেড্রোর সংখ্যার সমান সংখ্যক অণু/পরমাণু/আয়ন বিদ্যমান থাকে তাকে ঐ পদার্থের একমোল বলে। কার্বনের পারমাণবিক ভর ১২ একে গ্রাম এককে প্রকাশ করলে, ১২ গ্রাম কার্বন = ১ মোল কার্বন আবার পানির আণবিক ভর ১৮ সুতরাং ১ মোল পানি = ১৮ গ্রাম পানি। অম্লত্ব ও ক্ষারত্ব অম্ল বা ক্ষারের কয়েকটি তত্ত্ব রয়েছে; তার মধ্যে সবচেয়ে চেয়ে সহজতর তত্ত্বটি হচ্ছে 'আরহেনিয়াসের তত্ত্ব'। তার মতে, অম্ল হচ্ছে এমন ধরনের বস্তু যা পানির সাথে দ্রবীভুত হলে হাইড্রনিয়াম আয়ন উৎপন্ন করে এবং ক্ষার হল যা পানির সাথে দ্রবীভূত হলে হাইড্রোক্সাইড আয়ন উৎপন্ন করে। ব্রনস্টেড-লাউরি‘র অম্ল-ক্ষার সূত্রানুসারে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় যদি একটি মৌল অন্য একটি মৌলকে ধনাত্মক হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে তবে তাকে অম্ল বলে; অপরপক্ষে ক্ষার হচ্ছে ঐ বস্তু যা ঐ হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করে। এ সম্বন্ধে লুইস এর অম্ল-ক্ষার তত্ত্ব নামে তৃতীয় একটা তত্ত্ব রয়েছে, যার ভিত্তি হল নতুন রাসায়নিক বন্ধন গঠন করা। লুইসের তত্ত্বানুসারে অম্ল হচ্ছে ঐ মৌল যা বন্ধন গঠনের সময় অন্য মৌল হতে এক জোড়া ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম; অন্যদিকে ক্ষার হচ্ছে ঐ মৌল যা নতুন বন্ধনে এক জোড়া ইলেক্ট্রন দিতে পারে। তাছাড়া আরো অনেক ভাবেও অম্ল এবং ক্ষার কে সংজ্ঞায়িত করা হয়ে থাকে। অম্লের ক্ষমতা প্রধানত ২ পদ্ধতিতে পরিমাপ করা হয়ে থাকে।একটা পদ্ধতি হচ্ছে আরহেনিয়াসের অম্লত্বের বর্ণনার উপর ভিত্তি করে, pH, যেটা দ্রবণে ঘণীভূত হাইড্রোনিয়াম আয়ন কে বোঝায়। যেটাকে ঋণাত্মক লগারিদ্মিক স্কেল এ প্রকাশ করা হয়। এভাবে, যে দ্রবণের pH এর মান কম ও উচ্চ ঘণীভূত হাইড্রনিয়াম আয়ন তবে সেটা অধিক অম্লীয়। অন্য পদ্ধতি টা হচ্ছে, ব্রনস্টেড-লাউরি‘র বর্ণনার উপর ভিত্তি করে,যে বস্তুর ka এর মান অধিকতর এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় নিম্নতর ka মানের তুলনায় অত্যধিক পরিমাণে হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে। ব্রনস্টেড-লাউরি‘র অম্ল-ক্ষার সূত্রানুসারে, রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় যদি একটি মৌল অন্য একটি মৌলকে ধনাত্মক হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে তবে তাকে অম্ল বলে। অপরপক্ষে, ক্ষার হচ্ছে ঐ বস্তু যা ঐ হাইড্রোজেন আয়ন গ্রহণ করে। এ সম্বন্ধে লুইস এর অম্ল-ক্ষার তত্ত্ব নামে তৃতীয় একটা তত্ত্ব রয়েছে,যার ভিত্তি হল নতুন রাসায়নিক বন্ধন গঠন করা। লুইসের তত্ত্বানূসারে অম্ল হচ্ছে ঐ মৌল যা বন্ধন গঠনের সময় অন্য মৌল হতে এক জোড়া ইলেক্ট্রন গ্রহণ করতে সক্ষম; অন্যদিকে ক্ষার হচ্ছে ঐ মৌল যা নতুন বন্ধনে এক জোড়া ইলেক্ট্রন দিতে পারে। তাছাড়া আরো অনেক ভাবেও অম্ল ও ক্ষার কে সঙ্গায়িত করা হয়ে থাকে। অম্লের ক্ষমতা প্রধানত ২ পদ্ধতিতে পরিমাপ করা হয়ে থাকে।একটা পদ্ধতি হচ্ছে আরহেনিয়াসের অম্লত্বের বর্ণনার উপর ভিত্তি করে, pH ,যেটা দ্রবণে ঘণীভূত হাইড্রোনিয়াম আয়ন কে বোঝায়,যেটাকে ঋণাত্মক লগারিদ্মিক স্কেল এ প্রকাশ করা হয়। এভাবে,যে দ্রবণের pH এর মান কম ও উচ্চ ঘণীভূত হাইড্রনিয়াম আয়ন তবে সেটা অধিক অম্লীয়। অন্য পদ্ধতি টা হচ্ছে, ব্রনস্টেড-লাউরি‘র বর্ণনার উপর ভিত্তি করে, যে বস্তুর ka এর মান অধিকতর এবং রাসায়নিক বিক্রিয়ার সময় নিম্নতর ka মানের তুলনায় অত্যধিক পরিমাণে হাইড্রোজেন আয়ন প্রদান করে। দশা পদার্থের নির্দিষ্ট ভৌত অবস্থাকে (কঠিন, তরল,গ্যাসীয় ও প্লাজমা ) নির্দেশ করা হয়। জারণ-বিজারণ যে বিক্রিয়ায় ইলেক্ট্রন আদান প্রদান হয় তাকে জারণ-বিজারণ বিক্রিয়া বলে । যে বিক্রিয়ায় ইলেক্ট্রন ত্যাগ বা বর্জন করা হয় তাকে জারণ বলে । আবার যে বিক্রিয়ায় ইলেক্ট্রন গ্রহণ করা হয় তাকে বিজারণ বলে । জারক ইলেক্ট্রন গ্রহণ করে নিজে বিজারিত হয় এবং অপরকে জারিত করে আর বিজারক ইলেক্ট্রন ত্যাগ করে নিজে জারিত হয় এবং অপরকে বিজারিত করে । বন্ধন অণুতে পরমাণুসমূহ পরস্পর যেভাবে বন্ধন শক্তিতে যুক্ত থাকে, তাকে রাসায়নিক বন্ধন বলে। বিক্রিয়া রসায়নের পরিভাষায় যে পদ্ধতিতে দুই বা ততোধিক মৌল বা যৌগ পরস্পর যুক্ত হয়ে এক বা একাধিক নতুন যৌগ উৎপন্ন করে তাকে বিক্রিয়া বলে। যদি একাধিক মৌল বা যৌগ পরস্পর যুক্ত নতুন যৌগ উৎপন্ন না-করে তবে তাকে বিক্রিয়া বলা যাবে না। বিক্রিয়ায় মূলত পরমাণু বা ইলেকট্রনের আদান প্রদান ঘটে।এখানে তাপ উৎপন্ন হয়। রাসায়নিক সমীকরণ রাসায়নিক বিক্রিয়াকে সংক্ষেপে উপস্থাপন করার জন্য রাসায়নিক সমীকরণ ব্যবহার করা হয় ৷ অর্থাৎ সমীকরণ হলো রাসায়নিক শর্টহ্যান্ড (Chemical Shorthand ) ও কোনো রাসায়নিক প্রক্রিয়াকে রসায়নের ভাষায় প্রকাশ৷ রাসায়নিক সমীকরণ লেখার নিয়ম: রাসায়নিক বিক্রিয়া যে সকল পদার্থ নিয়ে শুরু হয় তাদেরকে বিক্রিয়ক ( Reactant ) এবং যে সকল পদার্থ উৎপন্ন হয়, তাদেরকে উৎপাদ (Product) বলে ৷ রাসায়নিক সমীকরণে বিক্রিয়কসমূহ বামপাশে এবং উৎপাদসমূহ ডানপাশে লিখে মাঝখানে সমান (=) অথবা তীর( → ) চিহ্ন দেয়া হয় ৷ বিক্রিয়ায় একাধিক বিক্রিয়ক এবং একাধিক উৎপাদ থাকলে তাদেরকে (+) চিহ্ন দিয়ে লেখা হয় ৷ সমীকরণের বামপাশে বিভিন্ন মৌলের পরমাণু সংখ্যা এবং ডানপাশে একই মৌলের পরমাণু সংখ্যা সমান করা হয় ৷ বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ ভিন্ন যৌগ হলেও তা অভিন্ন মৌলের পরমাণুর সমন্বয়ে গঠিত হয় ৷ এতে ভরের সংরক্ষণ নীতি অনুসরণ করে ৷ বিক্রিয়ক ও উৎপাদের ভৌত অবস্থা যৌগের ডানপাশে নিচে প্রথম বন্ধনীর মধ্যে লেখা হয় ৷ যৌগের ভৌত অবস্থা কঠিন (Solid) হলে (s), তরল (Liquid) হলে (l) এবং গ্যাসীয় (Gaseous) হলে (g) লেখা হয় ৷ বিক্রিয়ক এবং উৎপাদ হিসেবে কোনো যৌগের জলীয় দ্রবণ (Aqueous solution) থাকলে (aq) লেখা হয় ৷ রাসায়নিক সাম্যাবস্থা উভমুখী বিক্রিয়ার ক্ষেত্রে সময়ের সাথে এক সময় বিক্রিয়ার সম্মুখবেগ ও পশ্চাৎবেগ সমান হয়। এ অবস্থাকে রাসায়নিক সাম্যাবস্থা বলে। সাম্যাবস্থা তখনই হয়, যখন কোনো পদার্থের বিভিন্ন ধরনের গঠন সম্ভব হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় যে, বিভিন্ন যৌগের একটি মিশ্রণ যারা একজন আরেকজন এর সাথে বিক্রিয়া করতে পারে অথবা যখন একটি যৌগ একাধিক অবস্থায় থাকতে পারে সেটাই সাম্যাবস্থা। শক্তি বস্তুর শক্তি হচ্ছে ঐ বস্তু মোট যতখানি কাজ করতে পারে। উপবিভাগ ভৌত রসায়ন জৈব রসায়ন অজৈব রসায়ন পরিবেশ রসায়ন বিশ্লেষণী রসায়ন তড়িৎ রসায়ন রসায়ন বিভাগ রসায়ন বিজ্ঞানের একটি অন্যতম দিক । রসায়নের অনেক গুলো বিভাগ রয়েছে । যা বিজ্ঞান এর জন্য মঙ্গলজনক সবুজ রসায়ন সবুজ রসায়ন হলো রসায়নের একটি শাখা যাতে কম পরিবেশ দূষণ করে এবং ঝুঁকি হ্রাস করে এমন রাসায়নিক প্রক্রিয়া বা উৎপাদন-পদ্ধতি নিয়ে গবেষণা হয়। কার্যত: 'সবুজ রসায়ন' এমন একটি গবেষণাদর্শন যার উদ্দেশ্য এমন রাসায়নিক পদ্ধতির উদ্ভাবন ও অবলম্বন করা যাতে শিল্পজাত বর্জ্যের পরিমাণ হ্রাস পায়, ঝুকিঁপূর্ণ রাসায়নিক পদার্থের ব্যবহার হ্রাস পায় এবং শক্তির অপচয় হ্রাস পায়। এটি রসায়নের একটি নবতর শাখা। এর লক্ষ্য মানবদেহের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ উপাদান বর্জিত পণ্য ও পদ্ধতি আবিষ্কার। এটি পরিবেশ রসায়ন থেকে ভিন্ন। রাসায়নিক শিল্প ১. কাচ শিল্প ২. জ্বালানি শিল্প ৩. সিরামিক শিল্প ৪. পেট্রোলিয়াম শিল্প ৫. ঔষধ শিল্প ৬. সিমেন্ট শিল্প ৭. সার শিল্প ৮. পলিমার শিল্প ৯. চিনি শিল্প ১০. কাগজ শিল্প ১১. রং শিল্প ১২. কীটনাশক শিল্প ১৩. তেল শিল্প ১৪. সাবান ও ডিটারজেন্ট শিল্প ১৫. চামড়া শিল্প ১৬. লৌহ শিল্প ১৭. বিস্ফোরক শিল্প পেশাদার প্রতিষ্ঠান নিরাপত্তা কিছু রাসায়নিক উপাদান খুবই ক্ষতিকারক ও বিপজ্জনক। মার্কারী (২) ক্লোরাইড অত্যন্ত বিষাক্ত পদার্থ। ক্রোমেট ক্যান্সার সৃষ্টি করে। টিন (২) ক্লোরাইড খুব সহজেই পানি দূষণ করে থাকে। হাইড্রোক্লোরিক এসিড শরীরের চামড়া পুড়িয়ে ফেলে। হাইড্রোজেনের মতো পদার্থ বিস্ফোরক কিংবা অগ্নিসংযোগে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে। তাই, যাবতীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা রসায়ন পরীক্ষাগারে করা উচিত। সেখানে বিশেষ নিরাপত্তামূলক উপকরণ এবং কাপড়ের ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও রাসায়নিক উপকরণসমূহ সুবিন্যস্ত আকারে রাখা হয়। ঔষুধাদি তৈরীতে এর ব্যাপক ব্যবহার রয়েছে। ব্লিচের ন্যায় পদার্থের সাহায্যে পরীক্ষা করা হয় যে রাসায়নিক পদার্থটি নিরাপদ। কিছু রাসায়নিক বস্তু আরও দেখুন জৈব রসায়ন ভৌত রসায়ন বিশ্লেষণী রসায়ন রাসায়নিক বন্ধন রসায়নের ইতিহাস রসায়ন বিজ্ঞানিদের তালিকা যৌগের তালিকা রসায়নশাস্ত্রের রূপরেখা তথ্যসূত্র রসায়ন মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Chemistry
Chemistry
Chemistry is the scientific study of the properties and behavior of matter. It is a physical science within the natural sciences that studies the chemical elements that make up matter and compounds made of atoms, molecules and ions: their composition, structure, properties, behavior and the changes they undergo during reactions with other substances. Chemistry also addresses the nature of chemical bonds in chemical compounds. In the scope of its subject, chemistry occupies an intermediate position between physics and biology. It is sometimes called the central science because it provides a foundation for understanding both basic and applied scientific disciplines at a fundamental level. For example, chemistry explains aspects of plant growth (botany), the formation of igneous rocks (geology), how atmospheric ozone is formed and how environmental pollutants are degraded (ecology), the properties of the soil on the Moon (cosmochemistry), how medications work (pharmacology), and how to collect DNA evidence at a crime scene (forensics). Chemistry has existed under various names since ancient times. It has evolved, and now chemistry encompasses various areas of specialisation, or subdisciplines, that continue to increase in number and interrelate to create further interdisciplinary fields of study. The applications of various fields of chemistry are used frequently for economic purposes in the chemical industry.
1260
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%87%E0%A6%B0%20%E0%A6%87%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B8
বিজ্ঞানের ইতিহাস
বিজ্ঞানের ইতিহাস বলতে আমরা এখানে বুঝব এমন ধরনের ঐতিহাসিক নিদর্শন বা ঘটনাসমষ্টি যা যুগে যুগে বিভিন্ন সাংস্কৃতিক পরিমন্ডলে বিস্তার লাভ করেছে এবং যার ধারাবাহিকতায় বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রা অব্যাহত থেকেছে সবসময়। মূলত বিজ্ঞান কখনোও থেমে থাকেনি, বরং বিজ্ঞানের অগ্রযাত্রার মাধ্যমেই পৃথিবী এগিয়েছে এবং বিভিন্ন যুগ অতিক্রম করে বর্তমান অবস্থায় উপনীত হয়েছে। সত্যিকার অর্থে বিজ্ঞানের সূচনা মানব জন্মের শুরু থেকেই, পার্থক্য এই যে সে সময় মানুষ জানত না যে সে কি করেছে বা কোন সভ্যতার সূচনা ঘটতে চলেছে তার দ্বারা। প্রথম যে মানুষটি পাথরে পাথর ঘষে আগুন সৃষ্টি করেছিল সে কষ্মিনকালেও ভাবেনি যে সে একটি নব সভ্যতার জন্ম দিলো। এভাবেই চলেছিল অনেকটা কাল। তারপর একসময় যখন মানুষ তার কর্ম দেখে তার কাজের অর্থ ও গুরুত্ব বুঝতে পারল তখন সে তার কাজগুলোকে গুছিয়ে আনার চেষ্টা করল। আর এভাবেই জন্ম নিলো বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি। তারপরের ইতিহাস হল বিপ্লবের ইতিহাস যার পরে আর মানব সভ্যতাকে আর কখনও পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি। ষোড়শ ও সপ্তদশ শতাব্দীতে যখন বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সূচনা হয় তখন মানুষ বৈজ্ঞানিক পদ্ধতির মাধ্যমে জ্ঞানের বিবর্তনকেও পরিচালনা ও প্রত্যক্ষ করার যোগ্যতা অর্জন করে। এধরনের জ্ঞান এতটাই মৌলিক ছিল যে অনেকে (বিশেষত বিজ্ঞানের দার্শনিকরা) মনে করেন এই পরিবর্তনটি প্রাক বৈজ্ঞানিকতাকে নির্দেশ করে। অর্থাৎ যখন মানব মন বিকশিতই হয়নি তখনকার সময়কেও এটি অন্তর্ভুক্ত করে এবং নিগূঢ় অনুসন্ধান করে। বিজ্ঞানের ইতিহাস তত্ত্ব বিজ্ঞানের ইতিহাস নিয়ে যত গবেষণা হয়েছে তার অধিকংশই ছিল কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর দেয়ার মধ্যে আবর্তিত। প্রশ্নগুলোর মধ্যে রয়েছে- বিজ্ঞান কি, বিজ্ঞান কীভাবে কাজ করে, এর মধ্যে কি কি বিষয় অন্তর্ভুক্ত হয় ইত্যাদি। প্রাথমিক সংস্কৃতি প্রাগৈতিহাসিক যুগে, জ্ঞান এবং কৌশল মৌখিক ঐতিহ্যের মাধ্যমে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে স্থানান্তরিত হত। উদাহরণস্বরূপ, লিখন পদ্ধতির বিকাশের আগে দক্ষিণ মেক্সিকোয় কৃষিক্ষেত্রে ভুট্টার পোষ্যকরণের তারিখ প্রায় ৯,০০০ বছর পূর্বে ছিল। একইভাবে, প্রত্নতাত্ত্বিক প্রমাণগুলি পূর্ব-পূর্ববর্তী সমাজগুলিতে জ্যোতির্বিজ্ঞানের বিকাশকে ইঙ্গিত করে। লিখন পদ্ধতির বিকাশ মানুষকে প্রজন্ম থেকে প্রজন্মে আহরিত জ্ঞানকে অনেক বেশি যথার্থতার সাথে সংরক্ষণ করতে এবং তা ছড়িয়ে দিতে সক্ষম করে। বহু প্রাচীন সভ্যতা পদ্ধতিগতভাবে জ্যোতির্বিদ্যার পর্যবেক্ষণ সংগ্রহ করেছিল। পূর্ববর্তীরা বিশাল আকাশের আপেক্ষিক অবস্থানগুলি খোদাই করত, যা প্রায়শই ব্যক্তি এবং মানবজাতিকে প্রভাবিত করত। মানব দেহবিজ্ঞান সম্পর্কিত প্রাথমিক তথ্যগুলি কিছু জায়গায় জানা ছিল এবং বিভিন্ন সভ্যতায় আলকেমি অনুশীলন করা হয়েছিল।উল্লেখ্য যে, বিভিন্ন প্রাচীন সভ্যতয়ায় ম্যাক্রোস্কোপিক উদ্ভিদ এবং প্রাণীর পর্যবেক্ষণও করা হয়েছিল। প্রাচীন সভ্যতায় বিজ্ঞান চর্চা মেসোপটেমিয়ান প্রাচীন মেসোপটেমিয়ানদের "যুক্তিবাদী বিজ্ঞান" এবং যাদুবিদ্যার মধ্যে কোনও পার্থক্য ছিল না। যখন কোনও ব্যক্তি অসুস্থ হয়ে পড়ত, তখন চিকিৎসক ঔষধি চিকিৎসার পাশাপাশি আবৃত্তি করার জন্য যাদুকরী সূত্রগুলি নির্ধারণ করত। সর্বাধিক প্রাথমিক চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলি উমের তৃতীয় রাজবংশের সময় সুমেরিয়ায় প্রদর্শিত হয়েছিল (খ্রিস্টপূর্ব ২১১২ খ্রিস্টপূর্ব - খ্রিস্টপূর্ব ২০০৪)। ব্যাবিলনীয় বাদশাহ আদাদ-অপলা-ইদ্দিনের শাসনামলে (১০৯৬ - ১০৪৬) আমলে বা প্রধান পণ্ডিত, বোর্সিপার এসাগিল-কিন-এপলির লিখিত ডায়াগনস্টিক হ্যান্ডবুকটি অবশ্য বহুল ব্যাবিলিয়ান চিকিৎসার পাঠ্য। পূর্ব সেমেটিক সংস্কৃতিগুলিতে, প্রধান চিকিৎসক হ'ল এক ধরনের বহিরাগত-নিরাময়কারী যা আইপু নামে পরিচিত। পেশাটি সাধারণত বাবা থেকে পুত্রের দিকে চলে যায় এবং অত্যন্ত সম্মানের সাথে পরিচালিত হয়। আশু নামে পরিচিত আর এক ধরনের নিরাময়কারী ছিলেন, যিনি একজন আধুনিক চিকিৎসকের সাথে আরও ঘনিষ্ঠতার সাথে মিল রাখেন এবং বিভিন্ন উদ্ভিদ, প্রাণীর পণ্য এবং খনিজগুলি, পাশাপাশি প্যাশনস, এনিমা এবং মলম দ্বারা গঠিত মূলত লোক প্রতিকার ব্যবহার করে শারীরিক লক্ষণগুলির সাথে আরও ঘনিষ্ঠ হন এই চিকিত্সকরা। তারা পুরুষ বা মহিলা উভয়ই হতে পারেন, তারাও ক্ষত পরিষ্কার করতেন, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ স্থাপন করতেন এবং সহজ সার্জারি করতেন। প্রাচীন মেসোপটেমিয়ানরাও প্রফিল্যাক্সিস অনুশীলন করেছিলেন এবং রোগের বিস্তার রোধে ব্যবস্থা গ্রহণ করেছিলেন। প্রাচীন মেসোপটেমিয়ানদের মাটি, বালি, ধাতু আকরিক, বিটুমেন, পাথর এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক উপকরণের রাসায়নিক বৈশিষ্ট্য সম্পর্কে বিস্তৃত জ্ঞান ছিল এবং তারা এই জ্ঞানকে মৃৎশিল্প, বেড়া, কাঁচ, সাবান, ধাতু, চুন প্লাস্টার উৎপাদন এবং ব্যবহারিক প্রয়োগে প্রয়োগ করেছিলেন। জীবের জীববিজ্ঞান সাধারণত মূলধারার একাডেমিক শাখার প্রসঙ্গেই রচিত হত। ভবিষ্যদ্বাণী করার উদ্দেশ্যে অ্যানিম্যাল ফিজিওলজি ব্যাপকভাবে অধ্যয়ন করা হয়েছিল; লিভারের এনাটমি, যা হার্পসিসিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসাবে দেখা হত, বিশেষত নিবিড় বিশদভাবে অধ্যয়ন করা হয়েছিল। দিব্যমূলক উদ্দেশ্যে পশু আচরণও অধ্যয়ন করা হয়েছিল। প্রাণীদের প্রশিক্ষণ ও গৃহপালনের বিষয়ে বেশিরভাগ তথ্য সম্ভবত লিখিত না হয়ে মৌখিকভাবে প্রেরণ করা হয়েছিল, তবে ঘোড়ার প্রশিক্ষণের সাথে সম্পর্কিত একটি পাঠ্য টিকে আছে। মেসোপটেমিয়ান কিউনিফর্ম ট্যাবলেট প্লিম্পটন ৩২২, খ্রিস্টপূর্ব অষ্টাদশ শতাব্দীর সময়কালে, পাইথাগোরিয়ান ট্রিপল্টগুলি (৩,৪,৫) (৫,১২,১৩) ​​রেকর্ড করেছে যা ইঙ্গিত করে যে প্রাচীন মেসোপটেমিয়ানরা পিথাগোরাসের সহস্রাব্দ আগে থেকেই পিথাগোরিয়ান উপপাদ্যটি সম্পর্কে জ্ঞাত ছিলেন। ব্যাবিলনীয় জ্যোতির্বিদ্যায়, নক্ষত্র, গ্রহ এবং চাঁদের গতির রেকর্ডগুলি হাজার হাজার মাটির ট্যাবলেটগুলিতে লেখক দ্বারা তৈরি করা হয়েছে । আজও, মেসোপটেমিয়ান প্রোটো-বিজ্ঞানীদের দ্বারা চিহ্নিত জ্যোতির্বিদ্যার সময়গুলি সৌর বছর এবং চন্দ্র মাসের মতো পশ্চিমা ক্যালেন্ডারে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হয়। এই উপাত্ত ব্যবহার করে তারা বছরের পরিক্রমায় দিবালোকের পরিবর্তিত দৈর্ঘ্য গণনা করতে এবং চাঁদ এবং গ্রহের উপস্থিতি এবং সূর্য ও চাঁদের অন্তর্ধানের পূর্বাভাস দেওয়ার জন্য পাটিগণিত পদ্ধতিগুলি বিকশিত করেছিল। খালিদি জ্যোতির্বিদ ও গণিতবিদ কিডিনুর মতো মাত্র কয়েকজন জ্যোতির্বিজ্ঞানের নাম জানা যায়। সৌর বর্ষের জন্য কিডিনুর মান আজকের ক্যালেন্ডারের জন্য ব্যবহৃত হয়। ব্যাবিলনীয় জ্যোতির্বিজ্ঞান ছিল "জ্যোতির্বিদ্যার ঘটনাগুলির একটি পরিশোধিত গাণিতিক বিবরণ দেওয়ার প্রথম এবং অত্যন্ত সফল প্রচেষ্টা।" ঐতিহাসিক এ. অ্যাবোর মতে, "পরবর্তী হেলেনিস্টিক বিশ্বে, ভারতে, ইসলামে এবং পশ্চিমে সমস্ত বৈজ্ঞানিক জ্যোতির্বিজ্ঞান যদি সত্যিকারের বিজ্ঞানের যথাযথ প্রচেষ্টা না হয় তবে নির্ধারিত এবং মৌলিক উপায়ে ব্যাবিলনীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানের উপর নির্ভর করে"। আরও দেখুন ইতিহাস গণিতের ইতিহাস পরিমাপের ইতিহাস দর্শনের ইতিহাস জ্যোতির্বিজ্ঞানের ইতিহাস জীববিজ্ঞানের ইতিহাস রসায়নের ইতিহাস পদার্থবিজ্ঞানের ইতিহাস সামাজিক বিজ্ঞানের ইতিহাস বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ইতিহাস ভারতীয় প্রজাতন্ত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ইসলামি বিশ্বে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সময়রেখা প্রযুক্তির ইতিহাস বিজ্ঞানের ইতিহাস ও দর্শন বিজ্ঞানের দর্শন নোবেল পুরস্কারপ্রাপ্তদের তালিকা বিজ্ঞান প্রাকৃতিক বিজ্ঞান সামাজিক বিজ্ঞান বিজ্ঞানে নারী বহিঃসংযোগ এ হিস্টরি অফ সাইন্স, ১—৪ খণ্ড MIT STS.002 – বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের পথে , আইজ্যাক নিউটন সহ তার যুগ পর্যন্ত বিজ্ঞানের ইতিহাস MIT STS.042 – আইনস্টাইন, ওপেনহেইমার, ফীম্যান: বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিজ্ঞান বিংশ শতাব্দীর পদার্থবিজ্ঞানে নারীদের অবদান নোবেল ফাউন্ডেশনের দাপ্তরিক সাইট দ্য ইনস্টিটুউট অ্যান্ড মিউসিয়াম অফ দ্য হিস্টরি অফ সাইন্স, ফ্লোরেন্স, ইতালি বিজ্ঞানের ইতিহাস মূল বিষয়ের নিবন্ধ বিজ্ঞানবিদ্যা
https://en.wikipedia.org/wiki/History_of_science
History of science
The history of science covers the development of science from ancient times to the present. It encompasses all three major branches of science: natural, social, and formal. Protoscience, early sciences, and natural philosophies such as alchemy and astrology during the Bronze Age, Iron Age, classical antiquity, and the Middle Ages declined during the early modern period after the establishment of formal disciplines of science in the Age of Enlightenment. Science's earliest roots can be traced to Ancient Egypt and Mesopotamia around 3000 to 1200 BCE. These civilizations' contributions to mathematics, astronomy, and medicine influenced later Greek natural philosophy of classical antiquity, wherein formal attempts were made to provide explanations of events in the physical world based on natural causes. After the fall of the Western Roman Empire, knowledge of Greek conceptions of the world deteriorated in Latin-speaking Western Europe during the early centuries (400 to 1000 CE) of the Middle Ages, but survived in the Greek-speaking Byzantine Empire. Aided by Arabic translations of Greek texts, the Hellenistic worldview was preserved and absorbed into the Muslim world during the Islamic Golden Age. Muslim scientists made advances in science between the 8th and 13th centuries, such as developing an early scientific method that emphasized experimentation. The transfer and assimilation of Greek and Islamic science into Western Europe from the 11th to 13th centuries revived the learning of natural philosophy in the West. Traditions of early science were also developed in ancient India and separately in ancient China, the Chinese model having influenced Vietnam, Korea and Japan before Western exploration. Among the Pre-Columbian peoples of Mesoamerica, the Zapotec civilization established their first known traditions of astronomy and mathematics for producing calendars, followed by other civilizations such as the Maya. Natural philosophy was transformed during the Scientific Revolution in 16th- to 17th-century Europe, as new ideas and discoveries departed from previous Greek conceptions and traditions. The new science that emerged was more mechanistic in its worldview, more integrated with mathematics, and more reliable and open as its knowledge was based on a scientific method. More "revolutions" in subsequent centuries soon followed. The chemical revolution of the 18th century, for instance, introduced new quantitative methods and measurements for chemistry. In the 19th century, new perspectives regarding the conservation of energy, age of Earth, and evolution came into focus. And in the 20th century, new discoveries in genetics and physics laid the foundations for new sub disciplines such as molecular biology and particle physics. Moreover, industrial and military concerns as well as the increasing complexity of new research endeavors ushered in the era of "big science," particularly after World War II.
1261
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%9C%E0%A6%A8%E0%A7%80%E0%A6%A4%E0%A6%BF
রাজনীতি
রাজনীতি বা রাষ্ট্রনীতি বা রাজগতি বা রাজবুদ্ধি হলো হল দলীয় বা নির্দিষ্ট ব্যক্তিবর্গের মধ্যে ক্ষমতার সম্পর্কের ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণ বিষয়ক কর্মকাণ্ডের সমষ্টি, উদাহরণস্বরুপ সম্পদের বণ্টন হল এমন একটি কর্মকাণ্ড। রাজনীতি এ্যাকাডেমিক অধ্যয়নকে রাজনীতিবিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলে। রাষ্ট্রবিজ্ঞানের কাজ হলো রাজনীতি নিয়ে গবেষণা করা। রাজনীতি একটি বহুমুখী শব্দ। এটি আপোষের ও অহিংস রাজনৈতিক সমাধান প্রসঙ্গে ইতিবাচক অর্থে, অথবা সরকার বিষয়ক বিজ্ঞান বা কলা হিসেবে বিশদভাবে ব্যবহৃত হতে পারে, কিন্তু পাশাপাশি এটি প্রায়শই একটি নেতিবাচক অর্থও বহন করে। উদাহরণস্বরুপ, উচ্ছেদবাদী উইনডেল ফিলিপস ঘোষণা দেন "আমরা রাজনৈতিক চাল চালি না, দাসপ্রথার বিরোধিতা নিয়ে হাসি তামাশা করা আমাদের স্বভাবে নেই।" রাজনীতিকে বিভিন্নভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে, এবং বিভিন্ন পরিসরে মৌলিকভাবে এবিষয় নিয়ে দৃষ্টিভঙ্গির ভিন্নতা রয়েছে, যেমন এটি কীভাবে ব্যবহার করা উচিত, বিস্তৃতভাবে নাকি সীমিতভাবে, রাজকীয়ভাবে নাকি সাধারণভাবে, এবং কোনটি এক্ষেত্রে অবশ্যম্ভাবীঃ সংঘাত নাকি সমবায়। রাজনীতিতে বিভিন্ন ধরনের পদ্ধতি প্রয়োগ করা হয়, যার মধ্যে আছে কারও নিজস্ব রাজনৈতিক অভিমত মানুষের মাঝে প্রচার করা, অন্যান্য রাজনৈতিক ব্যক্তিবর্গের সঙ্গে মতবিনিময়, আইন প্রনয়ন, এবং বলপ্রয়োগের চর্চা করা, যার মধ্যে আছে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যুদ্ধ বা লড়াই। সামাজিক বিভিন্ন স্তরে বিস্তৃত পরিসরে রাজনীতির চর্চা করা হয়, ঐতিহ্যবাহী সমাজব্যবস্থাসমূহের গোত্র ও গোষ্ঠী থেকে শুরু করে আধুনিক স্থানীয় সরকার, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে সার্বভৌম রাষ্ট্র, এবং আন্তর্জাতিক পর্যায় পর্যন্ত। আধুনিক জাতি রাষ্ট্রগুলোতে, মানুষ প্রায়ই নিজস্ব মতবাদ তুলে ধরতে রাজনৈতিক দল গঠন করে। কোন দলের সদস্যগণ প্রায়শই বিভিন্ন বিষয়ে সহাবস্থানের ব্যাপারে ঐক্যমত্য পোষণ করে এবং আইনের একই পরিবর্তন ও একই নেতার প্রতি সমর্থনে সহমত হয়। এক্ষেত্রে নির্বাচন হল সাধারণত বিভিন্ন দলের মধ্যে একটি প্রতিযোগিতা। রাজনৈতিক ব্যবস্থা হল কোন কাঠামো যা কোন সমাজের মধ্যকার গ্রহণযোগ্য রাজনৈতিক পদ্ধতিসমূহকে সংজ্ঞায়িত করে। রাজনৈতিক চিন্তার ইতিহাস খুঁজে পাওয়া যায় প্রাথমিক প্রাচীন যুগে, যেখানে প্লেটোর রিপাবলিক, এরিস্টটলের রাজনীতি, চাণক্যর অর্থশাস্ত্র ও চাণক্য নীতি (খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতাব্দী), এবং কনফুসিয়াসের লেখার ন্যায় দিগন্ত উন্মোচনকারী কাজগুলো পাওয়া যায়। শব্দতত্ত্ব এর দ্বারা সাধারণত নাগরিক সরকারের অনুরূপ কর্মকাণ্ডকে বোঝানো হয়, তবে অন্যান্য অনেক সামাজিক প্রতিষ্ঠান, যেমন ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, ধর্মীয় প্রতিষ্ঠান যেখান মানুষের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বিদ্যমান, সেখানেও রাজনীতি চর্চা করা হয়। রাজনীতি কর্তৃত্ব ও ক্ষমতার ভিত্তিতে গঠিত সামাজিক সম্পর্ক নিয়ে গঠিত। উইলিয়াম কেরি তার বাংলা অভিধানে রাজনীতি শব্দের অর্থ করেছেন রাজন্য (the king) + নীতি (justice), অর্থাৎ রাজার ন্যায়বিচার। ইংরেজি পলিটিক্স শব্দটি এসেছে এরিস্টটল-এর ধ্রুপদী রচনা, পলিটিকা থেকে, যা (). নামক গ্রিক পরিভাষাটিকে ইংরেজিতে প্রবর্তন করে। ১৫ শতকের মাঝামাঝি, অ্যারিস্টটলের রচনাটি প্রাথমিক আধুনিক ইংরেজি ভাষায় পোলেটিকস () হিসাবে ডাকা করা হতো, যা আধুনিক ইংরেজি এ পলিটিক্স এ পরিণত হয়। একবচনে পলিটিক্স শব্দটি প্রথম ১৪৩০ সালে ইংরেজিতে প্রযুক্ত হয়, যা মধ্য ফরাসি —এর সমতুল্য যা নেওয়া হয়েছে ল্যাটিন থেকে, যা গ্রিক () এর একটি লাতিনিকৃত রূপ, যা () ও () থেকে এসেছে। আরবি ভাষায় নীতি ও রাজনীতি উভয়কে বোঝাতেই সিয়াসাত বা সিয়াসাহ (سياسة) শব্দটি ব্যবহৃত হয়, ব্যকরণবিদদের মতে, এটি আরবি ধাতু সাসা (ساس) থেকে এসেছে যার অর্থ পরিচালনা করা, ব্যবস্থাপনা করা, শাসন করা। শব্দটির ফিল মুদারী বা বর্তমান ও ভবিষ্যৎ ক্রিয়ারূপ হল ইয়াসুস (يسوس)। সংজ্ঞা হ্যারোল্ড ল্যাজওয়েলের মতে, রাজনীতি হল "যে যা, যখন, যেভাবে পায় সেটাই"। ডেভিড ইস্টনের মতে, "এটি হল কোন সমাজের জন্য মূল্যবান বিষয়গুলোর কর্তৃত্বপূর্ণ সুষম বণ্টন"। ভ্লাদিমির লেনিনের কাছে, "রাজনীতি হল অর্থনীতির সবচেয়ে ঘণীভূত বহিঃপ্রকাশ"। বার্নার্ড ক্রিক দাবি করেন যে, "রাজনৈতিক হল নীতিমালার একটি স্বতন্ত্র রূপ, যার দ্বারা মানুষ নিজেদের পার্থক্য মিটিয়ে ফেলার জন্য, বৈচিত্রময় আগ্রহ ও মূল্যবোধ উপভোগ করার জন্য এবং সাধারণ প্রয়োজনের বিষয় পরিচালনায় সরকারি নীতি তৈরির জন্য প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মিলেমিশে কাজ করে"। আড্রিয়ান লেফ্টউইচ সংজ্ঞা দেন যে, "রাজনীতি সমাজে ও সমাজসমূহের মধ্যে সমবায়, মতবিনিময় ও দ্বন্দ্বের সকল কাজের জন্ম দেয়, যার দ্বারা মানুষ তাদের জৈবিক ও সামাজিক জীবনের উৎপাদন ও প্রজননের নিমিত্তে মানবীয়, প্রাকৃতিক ও অন্যান্য সম্পদ ব্যবহার, উৎপাদন ও বণ্টনের ব্যবস্থাপনা পরিচালনা করে"। ইবনে সিদার মতে, বিষয়াবলির ব্যবস্থাপনা করাই হল সিয়াসাত বা নীতি বা রাজনীতি। সাহিব ইবনে আব্বাদও একই মত পোষণ করে বলেন, সিয়াসাত বা রাজনীতি হল রাজনীতিবিদ বা শাসকের কাজ, প্রশাসক তার প্রজাদের শাসন করে, আর তার নিম্নস্তরের শাসকেরা তাদের নিম্নস্তরের প্রজাদের শাসন করে, আর এটাই তাদের রাজনৈতিক বা শাসনের নীতি। ফায়রুজ আব্বাদী বলেন, রাজনীতিবিদ বা শাসকরাই রাজনীতি বা শাসনতন্ত্র নিয়ন্ত্রণ করেন, তারাই এটি প্রতিষ্ঠা করেন, আবার তারাই এটি ধ্বংস করেন। রাজনীতির প্রতি দৃষ্টিভঙ্গি বিস্তৃত ও সীমিত দৃষ্টিভঙ্গি নৈতিকতাবাদ ও বাস্তবতাবাদ রাজনীতির কিছু দৃষ্টিকোণ এটিকে অভিজ্ঞতাকে ক্ষমতার অনুশীলন হিসাবে দেখেন, আবার অন্যরা এটিকে আদর্শিক ভিত্তিতে সামাজিক ক্রিয়া হিসাবে দেখেন। এই পার্থক্যকে বলা হয় রাজনৈতিক নৈতিকতাবাদ এবং রাজনৈতিক বাস্তববাদ এর মধ্যে পার্থক্য। নৈতিকতাবাদীদের কাছে, রাজনীতি হল নীতিশাস্ত্রের সাথে নিবিড়ভাবে জড়িত বিষয় এবং অতি আদর্শ চিন্তার ক্ষেত্রে এর অবস্থান সর্বোচ্চ পর্যায়ের। উদাহরণস্বরূপ, হান্নাহ এ্যারেন্ড্টের মতে, এরিস্টোটলের দৃষ্টিভঙ্গি ছিল যে "রাজনৈতিক হওয়ার অর্থ হল সবকিছুই কথা ও যুক্তির মাধ্যমে নির্ধারিত হবে, সহিংসতার মাধ্যমে নয়।", যেখানে বার্নার্ড ক্রিকের মতে "রাজনীতি হল উন্মুক্ত সমাজ পরিচালনার পন্থা। রাজনীতি হল রাজনীতি আর অন্য প্রকারের নীতিনিয়মগুলো হল অন্যকিছু।"। অপরদিকে, নিকোলো ম্যাকিয়াভেলি, থমাস হবস, এবং হ্যারল্ড ল্যাজওয়েলের ন্যায় বাস্তববাদীদের কাছে, রাজনীতির ভিত্তি হল ফলাফল বিবেচনা ছাড়াই ক্ষমতার ব্যবহার করা। সংঘাত ও সমবায় ইতিহাস রাজনীতির ইতিহাসে এর উৎপত্তি, বিকাশ, এবং সরকারের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের অর্থনীতি বিষয়ে ধারণা পাওয়া যায়। রাজনীতির উদ্ভব মানবসভ্যতার বিকাশ এর সাথে সাথে রাজার রাজতান্ত্রিক চিন্তাধারার মধ্যে দিয়ে ঘটেছে ও পরিপূর্ণতা লাভ করেছে, রাজতান্ত্রিক চিন্তাধারা এবং রাজনৈতিক কলা কৌশল ও পরবর্তীকালের আধুনিক রাজনীতির শ্রেণী বিভাজন রাষ্ট্রবিজ্ঞানমূলক চিন্তাধারার উত্থান ঘটিয়েছে। মেকিয়াভেলী রচিত "The Prince" গ্রন্থটি রাজতন্ত্রের চরিত্র ও স্থায়ীত্ব নিয়ে বলিষ্ঠ বিশ্লেষণ করেছে । রাজনীতি হলো এককথায় এক বিশেষ রাজত্ব কেন্দ্রিক নীতি বা রাজার নীতি এটি একটা বিশেষ চেতনা বা আদর্শ। প্রাগৈতিহাসিক রাষ্ট্র গঠন প্রারম্ভিক রাষ্ট্র গঠনের বিষয়ে একাধিক বিভিন্ন তত্ত্ব এবং অনুমান রয়েছে, যা শুধু কিছু জায়গায় রাষ্ট্র কেন বিকশিত হয়েছিল, অন্যান্য যায়গায় নয়, তা ব্যাখ্যা করার জন্য সরলীকরণের চেষ্টা করে। অন্যান্য পণ্ডিতরা বিশ্বাস করেন যে সরলীকরণগুলি কোন কাজে আসে না এবং প্রাথমিক রাষ্ট্র গঠনের প্রতিটি উদাহরণকেই আলাদাভাবে বিচার করা উচিত। আদি রাষ্ট্র প্রাচীন ইতিহাসে সভ্যতার আজকের মতো নির্দিষ্ট সীমানা ছিল না এবং তাদের সীমানাকে রাষ্ট্রীয় সীমান্ত হিসাবে আরও সঠিকভাবে বর্ণনা করা যেতে পারে। প্রারম্ভিক রাজবংশীয় সুমের এবং আদি রাজবংশীয় মিশর ছিল তাদের সীমান্ত নির্ধারণ করার জন্য প্রথম সভ্যতা। তদুপরি, বিংশ শতাব্দী অবধি, বহু লোক রাজ্যহীন সমাজে বাস করত। এগুলি তুলনামূলক সমতাবাদী গোত্র এবং উপজাতি থেকে শুরু করে জটিল এবং উচ্চ স্তরীভূত স্তরের ন্যায় দলীয় নেতৃত্ব পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। আধুনিক রাষ্ট্র পিস অব ওয়েস্টফালিয়াকে (১৬৪৮) রাষ্ট্রবিজ্ঞানীগণ আধুনিক রাষ্ট্রব্যবস্থার সূচনা বলে মনে করেন, যাতে একটি দেশের আভ্যন্তরীন বিষয়ে বহিরাগত শক্তির হস্তক্ষেপ বর্জনীয় বলে বিবেচিত হয়। অন্যদেশের আভ্যন্তরীন ব্যাপারে হস্তক্ষেপ না করার নীতিটি ১৮-শতকের মাঝামাঝি সুইস আইনবিদ এমার ডি ভেটেল কর্তৃক প্রবর্তিত হয়। রাষ্ট্রগুলো একটি আন্তঃরাষ্ট্রীয় সম্পর্ক-ব্যবস্থায় প্রাথমিক প্রাতিষ্ঠানিক প্রতিনিধিতে পরিনত হয়। বলা হয়, পিস অব ওয়েস্টফালিয়া ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোতে অতিরাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব বাস্তবায়নের প্রচেষ্টায় ইতি টানে। স্বাধীন প্রতিনিধি হিসেবে রাষ্ট্রের ওয়েস্টফালীয় মতাদর্শ ১৯ শতকের জাতীয়তাবাদী চিন্তা দ্বারা মদদপুষ্ট হয়, যার অধীনে বৈধ রাষ্ট্রগুলো ভাষা ও সংষ্কৃতিভিত্তিক বহুদেশীয় সমবায় সংঘগুলোর সঙ্গে সম্পর্ক গড়তে শুরু করে। ইউরোপে, ১৮ শতকে ধ্রুপদী অ-জাতীয় রাজ্যগুলি ছিল বহুজাতিক সাম্রাজ্য, এরা হলঃ অস্ট্রিয়ান সাম্রাজ্য, ফ্রান্স রাজ্য, হাঙ্গেরি রাজ্য, রুশ সাম্রাজ্য, স্পেনীয় সাম্রাজ্য, উসমানীয় সাম্রাজ্য, ব্রিটিশ সাম্রাজ্য। এশিয়া, আফ্রিকা এবং আমেরিকাতেও এ জাতীয় সাম্রাজ্য বিদ্যমান ছিল। মুসলিম বিশ্বে ৬৩২ খ্রিস্টাব্দে মুহাম্মদের মৃত্যুর পরপরই খিলাফত প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল যা বহু-জাতিগত রুপান্তরিত-জাতীয় সাম্রাজ্যে পরিণত হয়েছিল। বহুজাতিক সাম্রাজ্য ছিল এক রাজা, সম্রাট বা সুলতান দ্বারা শাসিত নিরঙ্কুশ রাজতন্ত্র। জনগণ ছিল বহু নৃগোষ্ঠীর অন্তর্ভুক্ত, এবং তারা অনেক ভাষায় কথা বলতো। সাম্রাজ্যের একটি জাতিগত গোষ্ঠী দ্বারা আধিপত্য ছিল, এবং তাদের ভাষা সাধারণত জনপ্রশাসনের ভাষা ছিল। ক্ষমতাসীন রাজবংশ সাধারণত এই গোষ্ঠীর থেকেই ছিল, তবে সবসময় নয়। কিছু ছোট ইউরোপীয় রাজ্য জাতিগতভাবে বৈচিত্র্যময় ছিল না, তবে রাজপরিবার দ্বারা নিয়ন্ত্রিত রাজবংশীয় রাষ্ট্রও ছিল। কয়েকটি ছোট রাষ্ট্র বেঁচে গিয়েছিল, যেমন লিচটেনস্টাইন, আন্ডোরা, মোনাকো এবং সান মেরিনো প্রজাতন্ত্রের স্বতন্ত্র রাজত্ব। বিশ্বায়ন আন্তঃসরকারী সংস্থা এবং বহুরাষ্ট্রীয় সংঘবদ্ধতার মাধ্যমে বিশ শতকে রাজনৈতিক বিশ্বায়নের সূচনা হয়েছিল। লীগ অব নেশনস প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল এবং দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে এটি জাতিসংঘ দ্বারা প্রতিস্থাপিত হয়েছিল। এর মাধ্যমে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। আঞ্চলিক সংহতকরণের উদ্দেশ্যে তৈরি হয় আফ্রিকান ইউনিয়ন, আসিয়ান, ইউরোপীয় ইউনিয়ন এবং মারকোসু। আন্তর্জাতিক স্তরের রাজনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত, আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল এবং বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা। রাজনৈতিক বিজ্ঞান বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান সমাজবিজ্ঞানের যে শাখায় রাজনীতি রাষ্ট্র এবং সরকার সম্পর্কীয় বিষয়াবলী নিয়ে আলোকপাত করা হয় তাকে রাজনীতিবিজ্ঞান (পলিটিকাল সায়েন্স) বা রাষ্ট্রবিজ্ঞান বলে। এরিস্টটল উক্ত বিজ্ঞানকে রাষ্ট্র সম্পর্কীয় বিজ্ঞান নামে উল্লেখ করেছেন। এতে তুলনামূলক রাজনীতি, রাজনৈতিক অর্থনীতি, আন্তর্জাতিক সম্পর্ক, রাজনৈতিক দর্শন, জনপ্রশাসন, জননীতি এবং রাজনৈতিক পদ্ধতি সহ অসংখ্য উপক্ষেত্র রয়েছে। তদুপরি, রাষ্ট্রবিজ্ঞান অর্থনীতি, আইন, সমাজবিজ্ঞান, ইতিহাস, ভূগোল, মনোবিজ্ঞান বা মনোচিকিৎসা, নৃবিজ্ঞান, এবং স্নায়ুবিজ্ঞানের সাথে সম্পর্কিত এবং নির্ভরশীল। রাজনীতির বৈশিষ্ট্যসমূহ রাষ্ট্রব্যবস্থা রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা রাষ্ট্রব্যবস্থার দ্বারা সরকারের দাপ্তরিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়াকে সংজ্ঞায়িত করা হয়। একে সাধারণত আইন ব্যবস্থা, অর্থনৈতিক ব্যবস্থা ও সমাজ ব্যবস্থার সঙ্গে তুলনা করা হয়ে থাকে। ডেভিড ইস্টনের মতে, "রাজনৈতিক ব্যবস্থাকে কোন সমাজের জন্য মূল্যবোধসমূহকে কর্তৃত্বপূর্ণ পন্থায় বরাদ্দকারী মিথষ্ক্রিয়ারূপে গণ্য করা যেতে পারে।" প্রতিটি রাজনৈতিক ব্যবস্থাই কোন একটি সমাজের অংশ যার নিজস্ব রাজনৈতিক সংষ্কৃতি আছে, এবং ফলশ্রুতিতে তারা সরকারি নীতিমালার মাধ্যমে সমাজ বিনির্মাণ করে। বিভিন্ন রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যস্থ মিথষ্ক্রিয়া হল বৈশ্বিক রাজনীতির ভিত্তি। সরকারের প্রকারভেদ সরকার হলো কোনো দেশের সর্বোচ্চ সংস্থা ও কর্তৃপক্ষ যার মাধ্যমে দেশটির শাসন কার্য পরিচালিত হয়। সরকারের মৌলিক দায়িত্ব জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী দেশের নিরাপত্তা বিধান করা, সমাজের শান্তি বজায় রাখা, মানুষের জান-মাল রক্ষা করা এবং বিবাদের ক্ষেত্রে বিচারকার্য পরিচালনা করা। সরকার তার ওপর আরোপিত দায়িত্বসমূহ পালনের স্বার্থে রাজস্ব আহরণ করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তা ব্যয় করে থাকে। ক্ষমতার উৎস ক্ষমতার উৎসের ভিত্তিতে সরকারে প্রকারভেদ নিম্নে বর্নিত হলঃ নৈরাজ্যবাদ – এটি এমন একটি রাজনৈতিক দর্শন যা রাষ্ট্রকে অপ্রয়োজনীয়, ক্ষতিকর ও অবাঞ্ছনীয় মনে করে এবং রাষ্ট্রহীন সমাজের সপক্ষে মতপ্রকাশ করে। কর্তৃত্ববাদী সরকার – কর্তৃত্ববাদী সরকার কোনো প্রজাতন্ত্র বা যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তৃত্বের সপক্ষে মতপ্রকাশ করে। এটি অনির্বাচিত শাসকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি ব্যবস্থা, যাঁরা কিছুটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা দিয়ে থাকেন। সাংবিধানিক রাজতন্ত্র – এই জাতীয় সরকারে একটি রাজতন্ত্র বিদ্যমান; কিন্তু উক্ত রাজতন্ত্রের ক্ষমতা আইন বা ঘোষিত সংবিধানের দ্বারা সীমাবদ্ধ। উদাহরণ: যুক্তরাজ্য। সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র – এই জাতীয় সরকারের ক্ষমতা আইন বা আনুষ্ঠানিক সংবিধান দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং এই সরকার সংশ্লিষ্ট দেশের জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ দ্বারা নির্বাচিত। উল্লেখ্য, প্রাচীন স্পার্টা ঘোষিতভাবে ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র; কিন্তু সেদেশের অধিকাংশ মানুষই ভোটদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকতেন। আবার প্রথম যুগের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ছিল গণতান্ত্রিক দেশ; কিন্তু ক্রীতদাসদের সেযুগে ভোটদানের অধিকার ছিল না। গণতন্ত্র – গণতন্ত্র হল এমন একটি সরকার যা দেশের জনসংখ্যার বৃহত্তম অংশ দ্বারা নির্বাচিত। এই সরকার সাংবিধানিক রাজতন্ত্র বা সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র দুইই হতে পারে। গণতন্ত্রের ব্যক্তির ভোটদানের অধিকার তার সামাজিক মর্যাদা বা সম্পদের উপর নির্ভরশীল নয়। একনায়কতন্ত্র – একক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় শাসিত দেশের সরকার। স্বৈরাচারী শাসক সাধারণত বলপূর্বক ক্ষমতা দখল করেন। (আরও দেখুন স্বৈরতন্ত্র ও রাষ্ট্রতন্ত্র) রাজতন্ত্র – এমন ব্যক্তির শাসন যিনি শাসনক্ষমতা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হন। সংকীর্ণ গোষ্ঠীতন্ত্র – একই স্বার্থবিশিষ্ট ছোটো ছোটো গোষ্ঠী বা পরিবারের শাসন। ধনিকতন্ত্র – ধনবান শ্রেণির শাসন। দিব্যতন্ত্র – ধর্মীয় নেতাদের শাসনতন্ত্র। সর্বনিয়ন্ত্রণবাদী সরকার – এই জাতীয় সরকার সরকার ও ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজ কর্তৃত্ব আরোপ করে। আইনানুগমনবাদী সরকার – এই জাতীয় সরকার আইনের শাসনকে চূড়ান্ত মনে করে; আইনমান্যকারীদের পুরস্কৃত করে ও আইনভঙ্গকারীদের কঠিন শাস্তি দেয়। রাষ্ট্র রাষ্ট্র বলতে এমন এক রাজনৈতিক সংগঠনকে বোঝায় যা কোন একটি ভৌগোলিক এলাকা ও তৎসংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার সার্বভৌম ক্ষমতা রাখে। রাষ্ট্র সাধারণত একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ভৌগোলিক সীমার ভেতর বসবাসকারী সমাজের সদস্যদের শাসনের জন্য নিয়ম-কানুন তৈরি করে। যদিও একথা ঠিক যে রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পাওয়া না পাওয়া বহুলাংশে নির্ভর করে, রাষ্ট্র হিসেবে তার উপর প্রভাব রাখা ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির উপর। সংবিধান সংবিধান কোন শাসনব্যবস্থার মূল গ্রন্থ যাতে স্বায়ত্তশাসিত কোন রাজনৈতিক সত্তার কর্তব্য নির্ধারণের মৌলিক নিয়ম ও সূত্রসমূহ লিপিবদ্ধ থাকে।<ref>দ্যা নিউ অক্সফোর্ড আমেরিকান ডিকশনারি, দ্বিতীয় সংস্করণ, </b>Erin McKean</b> (লেখক), ২০৫১ পৃষ্ঠা , মে ২০০৫ , অক্সফোর্ড ইউনিভার্সিটি প্রেস , .</ref> কোন দেশের ক্ষেত্রে এই শব্দ সেই দেশের জাতীয় সংবিধানকে বোঝায় যা রাজনৈতিক মৌলিক নিয়ম ও সরকারের পরিকাঠামো, পদ্ধতি, ক্ষমতা ও কর্তব্যকে প্রতিস্তাপিত করে। সংবিধান দুই ধরনের হতে পারে এক,লিখিত দুই, অলিখিত ৷ রাজনৈতিক সংস্কৃতি সংস্কৃতি কীভাবে রাজনীতিতে প্রভাব ফেলে, তার বিবরণ দেয় রাজনৈতিক সংষ্কৃতি। প্রতিটি রাজনৈতিক ব্যবস্থা একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক সংষ্কৃতির অন্তর্গত বিষয়। লুসিয়ান পাইয়ের সংজ্ঞা হল "রাজনৈতিক সংস্কৃতি হল মনোভাব, বিশ্বাস এবং অনুভূতিগুলির সমষ্টি, যা একটি রাজনৈতিক প্রক্রিয়াটিকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করে এবং অর্থ দেয় এবং যা রাজনৈতিক ব্যবস্থায় আচরণ নিয়ন্ত্রণ করে এমন অন্তর্নিহিত ধারণা এবং নীতি সরবরাহ করে।" আস্থা হল রাজনৈতিক সংষ্কৃতিতে একটি মুখ্য উপাদান, কারণ এর মাত্রাই রাষ্ট্রের কার্যক্ষমতা নির্ধারণ করে। উত্তর-বস্তুবাদ হল এমন একটি পর্যায়, যেখানে একটি রাজনৈতিক সংস্কৃতি এমন বিষয়গুলির সাথে সম্পর্কিত যা মানবাধিকার এবং পরিবেশবাদের মত তাৎক্ষণিক শারীরিক বা বৈষয়িক উদ্বেগের বিষয় নয়। রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে ধর্মেরও প্রভাব রয়েছে। রাজনৈতিক ত্রুটিবিচ্যুতি রাজনৈতিক দুর্নীতি রাজনৈতিক নেতারা রাজনৈতিক প্রতিযোগিতায় জেতার জন্য প্রায়শই বিভিন্ন অনৈতিক ও অমানবিক পথ অবলম্বন করে এবং এতে তাদের আপত্তি বা সংকোচ হয় না। মানুষ হত্যা,নারীদের যৌন নির্যাতন এবং কোন সমস্যা তৈরি করতে তারা সক্রিয় হয় এবং এর জন্য সমাজের অনেক ক্ষতি হয়। রাজনৈতিক দ্বন্দ্ব-সংঘাত রাজনৈতিক স্তরবিন্যাস বৃহৎ রাজনীতি বিশ্ব রাজনীতি বলতে বিশ্বের রাজনৈতিক ঘটনাবলির একটি বিশ্বব্যাপী সামগ্রিক চিত্রকে বোঝায় যেখানে কেবলমাত্র বিশ্ব পর্যায় নয়, বরং বৈশ্বিক, জাতীয়, আঞ্চলিক, ইত্যাদি সমস্ত স্তরের রাজনৈতিক ঘটনাবলি ও তাদের মধ্যকার আন্তঃসম্পর্কের বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত। বিশ্ব রাজনীতির গবেষণা তাই আন্তর্জাতিক রাজনীতির গবেষণা অপেক্ষা ভিন্ন একটি ক্ষেত্র, এবং এগুলি একে অপরের পরিপূরক ভূমিকা পালন করে। আন্তর্জাতিক রাজনীতি বিগত দশকগুলিতে ধীরে ধীরে বৈশ্বিক রাজনীতিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। সনাতনি রাষ্ট্র ও জাতীয় সরকারগুলির পাশাপাশি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে নতুন নতুন অংশগ্রহণকারীর আবির্ভাব ঘটেছে। বিশ্ব রাজনীতিতে আন্তঃসংযুক্ততা ও আন্তঃনির্ভরশীলতার মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে, তবে সর্বত্র সমভাবে নয়। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে নৈরাজ্যমূলক পরিস্থিতিকে প্রতিস্থাপন করে আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক সুশাসনের একটি পরিকাঠামোর উদ্ভব হয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন স্থানের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক ও অন্যান্য পর্যায়ে যে জটিল আন্তঃসংযুক্ততার জালিকাব্যবস্থার উদ্ভব ঘটেছে, সেই ব্যাপারটিকে বিশ্বায়ন নাম দেওয়া হয়েছে। বিশ্বায়নের ফলে বিশ্বের যেকোনও স্থানের মানুষের দৈনন্দিন জীবন বহুদূরে অবস্থিত ঘটনাবলি বা গৃহীত সিদ্ধান্ত দ্বারা উত্তরোত্তর প্রভাবিত হচ্ছে। বিশ্বায়নকে মূলত অর্থনৈতিক বিশ্বায়ন, সাংস্কৃতিক বিশ্বায়ন ও রাজনৈতিক বিশ্বায়ন - এই তিনটি শ্রেণীতে ভাগ করে আলোচনা করা হয়। তবে বিশ্বায়ন বলে আদৌ কিছু আছে কি না, থাকলেও কোনও তাৎপর্যপূর্ণ কিছু কি না এবং বিশ্ব রাজনীতির রূপান্তরে এর ভূমিকা কতটুকু - এসব ব্যাপারে প্রচুর বিতর্ক বিদ্যমান। বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে দুইটি মূলধারার দৃষ্টিভঙ্গি বিদ্যমান-- বাস্তববাদ ও উদারপন্থীবাদ। দুইটিতেই বিশ্বায়নকে ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখা হয় এবং রাষ্ট্রসমূহের সম্পর্কের মধ্যে সংঘাত ও সহযোগিতার ভারসাম্য নিয়ে আলোচনা করা হয়, যদিও উক্ত ভারসাম্যের প্রকৃতি সম্পর্কে এই দুই দৃষ্টিভঙ্গির মধ্যে যথেষ্ট পার্থক্য আছে। মূলধারার বিপরীতে বিশ্ব রাজনীতি নিয়ে সমালোচনামূলক দৃষ্টিভঙ্গি বা তত্ত্বসম্ভারও বিদ্যমান। এগুলিতে বর্তমানে বিশ্ব রাজনীতিতে বিরাজমান স্থিতাবস্থার (status quo)-র নেতিবাচক সমালোচনা করা হয় এবং এই ব্যবস্থাতে প্রান্তিক বা নিপীড়িত দলগুলির উপর বেশি জোর দেওয়া হয়। মধ্যবর্তী রাজনীতি মধ্যবর্তী রাজনীতিতে রাজনৈতিক ব্যবস্থার অভ্যন্তরের মাধ্যমিক অবকাঠামোসমূহ নিয়ে আলোচনা করা হয়, যেমন জাতীয় রাজনৈতিক দল বা আন্দোলনসমূহ। একটি রাজনৈতিক দল হল একটি রাজনৈতিক সংগঠন যা সাধারণত রাজনৈতিক প্রচারণা, শিক্ষা বিস্তার কার্যক্রম অথবা আন্দোলনমূলক কর্মকান্ডের মাধ্যমে সরকারি রাজনৈতিক ক্ষমতা অর্জন ও নিয়ন্ত্রণ হাসিল করতে চায়। দলগুলো প্রায়ই নির্দিষ্ট লক্ষ্য সংবলিত কোন লিখিত কর্মপন্থা দ্বারা সমর্থিত কোন প্রকাশ্য মতাদর্শ বা দর্শনের পক্ষাবলম্বন করে। কোন নির্দিষ্ট রাজনৈতিক ব্যবস্থার মধ্যস্থ রাজনৈতিক দলগুলো একত্রে দলীয় ব্যবস্থা তৈরি করে। এটি হতে পারে কোন বহুদলীয় ব্যবস্থা, একটি দুই দলীয় ব্যবস্থা, একটি কেন্দ্রীয় দল ব্যবস্থা অথবা একটি একদলীয় ব্যবস্থা, যা দলের সংখ্যার মাত্রার উপর নির্ভর করে। এটি এর নির্বাচনী ব্যবস্থা সহ সকল রাজনৈতিক ব্যবস্থার বৈশিষ্ট্য দ্বারা প্রভাবিত হয়। ডুবার্গারের নীতি অনুযায়ী, ফার্স্ট-পাস্ট-দ্য-পোস্ট ব্যবস্থা সাধারণত দুই দলীয় ব্যবস্থার দিকে অগ্রসর হয়, অপরদিকে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্ব ব্যবস্থায় বহুদলীয় ব্যবস্থা তৈরীর সম্ভাবনা বেশি থাকে। ক্ষুদ্র রাজনীতি ক্ষুদ্র রাজনীতি বা মাইক্রোপলিটিক্স দ্বারা রাজনৈতিক ব্যবস্থার মাঝে স্বতন্ত্র কর্মীদের কাজকর্মকে বোঝানো হয়। একে প্রায়শই রাজনীতিতে অংশগ্রহণ হিসাবে বর্ণনা করা হয়। উক্ত রাজনৈতিক অংশগ্রহণ বিভিন্ন রকমের পারে, যেমন: আন্দোলন বয়কট আইন অমান্য করা সংহতি প্রদর্শন পিটিশন পিকেটিং ধর্মঘট কর প্রতিরোধ ভোটদান (বা এর বিপরীতে, ভোটদানে বিরত থাকা) রাজনৈতিক মূল্যবোধসমূহ গণতন্ত্র গণতন্ত্র বলতে কোনও জাতিরাষ্ট্রের (অথবা কোনও সংগঠনের) এমন একটি শাসনব্যবস্থাকে বোঝায় যেখানে নীতিনির্ধারণ বা সরকারি প্রতিনিধি নির্বাচনের ক্ষেত্রে প্রত্যেক নাগরিক বা সদস্যের সমান ভোটাধিকার থাকে। গণতন্ত্রে আইন প্রস্তাবনা, প্রণয়ন ও তৈরীর ক্ষেত্রে সকল নাগরিকের অংশগ্রহণের সমান সু্যোগ রয়েছে, যা সরাসরি বা নির্বাচিত প্রতিনিধির মাধ্যমে হয়ে থাকে। "গণতন্ত্র" পরিভাষাটি সাধারণভাবে একটি রাজনৈতিক রাষ্ট্রের ক্ষেত্রেই প্রয়োগ করা হলেও অন্যান্য সংস্থা বা সংগঠনের ক্ষেত্রেও এটি প্রযোজ্য হতে পারে, যেমন বিশ্ববিদ্যালয়, শ্রমিক ইউনিয়ন, রাষ্ট্র-মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান ইত্যাদি। রাজনৈতিক তত্ববিদদের মতে বর্তমানে তিনটি শক্তিশালী গণতান্ত্রিক মতবাদ আছে। এগুলো হলঃ সামষ্টিক গণতন্ত্র, সুচিন্তিত গণতন্ত্র ও মৌলবাদী গণতন্ত্র। সামষ্টিক সুচিন্তিত মৌলবাদী সমতা বাম-ডান বর্ণালী বামপন্থী রাজনীতি হচ্ছে সেই রাজনৈতিক অবস্থান বা কর্মকাণ্ড যা সামাজিক অসাম্য ও সামাজিক ক্রমাধিকারতন্ত্রের বিরুদ্ধে সামাজিক সাম্যকে গ্রহণ বা সমর্থন করে। এই রাজনীতি বিশেষভাবে জড়িত থাকে সমাজে যারা অন্যের তুলনায় কম পায় বা সুযোগহীন থাকে তাদের ব্যাপারে এবং পূর্বধারনা করে যে অসাম্যের অবিচার কমানো বা বিলুপ্ত করা উচিত। রাজনীতিতে ডানপন্থা বা ডানপন্থী বিশেষণগুলো ব্যবহৃত হয় এমন মতাদর্শের ক্ষেত্রে, যা মানুষের অর্থনৈতিক বা ঐতিহ্যগত বা সামাজিক শ্রেণীগত বিভেদ বা ধাপবিন্যাসকে সমর্থন করে। ভিন্ন ভিন্ন ডানপন্থী রাজনৈতিক দল বিভিন্ন মাত্রায় বামপন্থী রাজনীতি সমর্থিত সাম্যবাদের বিরোধিতা করে থাকে, এবং সার্বিক সাম্য চাপিয়ে দেওয়াকে সমাজের জন্য ক্ষতিকর বলে মনে করে থাকে। স্বাধীনতা রক্ষণশীল-উদারপন্থী রক্ষণশীলতাবাদ হল দ্রুত পরিবর্তনের বিরোধিতা, এবং এটি সমাজে ঐতিহ্যকে ধরে রাখার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করে। গ্র্যাজুয়ালিজম বা পর্যায়ক্রমিক পরিবর্তনবাদ এর একটি প্রকরণ। উদারপন্থী মতবাদ সাম্য ও মুক্তির উপর নির্ভর করে সৃষ্ট একধরনের বৈশ্বিক রাজনৈতিক দর্শন।সাতোশি কানাজাওয়া উদারতাবাদকে রক্ষণশীলতার বিপরীত হিসেবে দেখিয়েছেন। তার মতে, পরস্পর অসম্পৃক্ত সত্ত্বা একে অপরের ভাল করতে চায় এবং তার ফলেই উদারতাবাদের সৃষ্টি হয়। দেখুন. এ দুইটি নীতির উপর ভিত্তি করে উদারতাবাদকে অনেক বিস্তৃত আকার দেওয়া হয়েছে। অবাধ ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন, জনগণের অধিকার, সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, ধর্মীয় স্বাধীনতা, মুক্তবাণিজ্য, ব্যক্তিগত মালিকানা প্রভৃতি ধারণার উদ্ভব ঘটেছে এ দর্শনের উপর ভিত্তি করে। আরও দেখুন কূটনীতি জননীতি সরকার শাসননীতি রাষ্ট্র প্রশাসন বুদ্ধিজীবী মধ্যপন্থী কেন্দ্রপন্থী রাজনীতি ইসলামে রাজনীতি তথ্যসূত্র আরও পড়ুন Connolly, William (1981). Appearance and Reality in Politics. Cambridge: Cambridge University Press. James, Paul; Soguk, Nevzat (2014). Globalization and Politics, Vol. 1: Global Political and Legal Governance. London: Sage Publications. Ryan, Alan: On Politics: A History of Political Thought from Herodotus to the Present.'' London: Allen Lane, 2012. সমাজ রাজনীতি মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Politics
Politics
Politics (from Ancient Greek πολιτικά (politiká) 'affairs of the cities') is the set of activities that are associated with making decisions in groups, or other forms of power relations among individuals, such as the distribution of status or resources. The branch of social science that studies politics and government is referred to as political science. They may be used positively in the context of a "political solution" which is compromising and non-violent, or descriptively as "the art or science of government", but also often carries a negative connotation. The concept has been defined in various ways, and different approaches have fundamentally differing views on whether it should be used extensively or in a limited way, empirically or normatively, and on whether conflict or co-operation is more essential to it. A variety of methods are deployed in politics, which include promoting one's own political views among people, negotiation with other political subjects, making laws, and exercising internal and external force, including warfare against adversaries. Politics is exercised on a wide range of social levels, from clans and tribes of traditional societies, through modern local governments, companies and institutions up to sovereign states, to the international level. In modern nation states, people often form political parties to represent their ideas. Members of a party often agree to take the same position on many issues and agree to support the same changes to law and the same leaders. An election is usually a competition between different parties. A political system is a framework which defines acceptable political methods within a society. The history of political thought can be traced back to early antiquity, with seminal works such as Plato's Republic, Aristotle's Politics, Confucius's political manuscripts and Chanakya's Arthashastra.
1262
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8
মনোবিজ্ঞান
মনোবিজ্ঞান বা মনস্তত্ত্ববিদ্যা হল, মানসিক প্রক্রিয়া ও আচরণ সম্পর্কিত বিদ্যা ও অধ্যয়ন। এটি বিজ্ঞানের একটি তাত্ত্বিক ও ফলিত শাখা যাতে মানসিক কর্মপ্রক্রিয়া ও আচরণসমূহ নিয়ে বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান করা হয়। বিভিন্ন বিজ্ঞানী মনোবিজ্ঞানকে "মানুষ এবং প্রাণী আচরণের বিজ্ঞান" হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছেন। আবার অনেক বিজ্ঞানী একে সংজ্ঞায়িত করেছেন "আচরণ ও মানসিক প্রক্রিয়ার বিজ্ঞান" হিসাবে। মনোবিজ্ঞান মূলত মানুষের সাথে সম্পর্কিত, তবে অন্যান্য প্রাণীর ক্ষেত্রেও এটি ব্যবহৃত হয়। মনোবিজ্ঞানকে সম্পূর্ণভাবে অধ্যয়ন করা কঠিন হওয়ার কারণে, মনোবিজ্ঞানিগণ প্রায়শই বিভিন্ন সময়ে এর বিভিন্ন অংশের দিকে নজর দেন। বিজ্ঞানের অন্যান্য ক্ষেত্রের সঙ্গে মনোবিজ্ঞানের ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ও যোগসূত্র রয়েছে। এর কিছু ক্ষেত্র হল মেডিসিন, আচরণবিজ্ঞান, কম্পিউটার বিজ্ঞান, এবং ভাষাবিজ্ঞান। মনোবিজ্ঞানের কর্মক্ষেত্রে, একজন পেশাগত প্রশিক্ষণার্থী বা গবেষককে মনোবিজ্ঞানী এবং সামাজিক, আচরণিক ও চেতনাবিজ্ঞানী বলে ডাকা হয়। মনোবিজ্ঞানী ব্যক্তিগত ও সামাজিক আচরণের ক্ষেত্রে মানসিক কর্মপ্রক্রিয়ার ভূমিকাকে বোঝার চেষ্টা করেন। পাশাপাশি তারা চেতনাগত প্রক্রিয়া ও আচরণের পেছনের মনস্তাত্ত্বিক ও স্নায়বিক প্রক্রিয়াকেও অনুসন্ধান করেন। মনোবিজ্ঞানের ইতিহাস ও প্রারম্ভিক বিকাশ উনিশ শতকের আগে মন সম্পর্কীয় সকল অধ্যয়ন দর্শনের অন্তর্ভুক্ত ছিল। দার্শনিকগণ মানসিক আচার-আচরণ বা ক্রিয়া-কলাপ সম্পর্কে কেবল অনুমান করেছিলেন। মন সম্পর্কে গ্রীক দার্শনিক প্লেটো সর্বপ্রথম ব্যাখ্যা করেন। তিনি মনকে দেহ থেকে বিচ্ছিন্ন সত্তা হিসাবে গণ্য করেন। আধুনিক যুগে স্নায়ুবিজ্ঞান ও প্রাণীবিজ্ঞানের বিকাশের সাথে সাথে মনোবিজ্ঞানেরও নব বিকাশ ঘটে ও আধুনিক বিজ্ঞানের এক অন্যতম শাখা হিসাবে মনোবিজ্ঞানের বিকাশ আরম্ভ হয়। স্নায়ুবিজ্ঞান ও প্রাণীবিজ্ঞানের মধ্যেই যে মনোবিজ্ঞানের প্রাথমিক ভিত্তি নিহিত হয়ে আছে সেই কথা সর্বপ্রথম বলেন জার্মান শরীর বিজ্ঞানী জোহানেস পিটার মুলার। অবশ্য মনোবিজ্ঞানকে বিজ্ঞান হিসাবে প্রতিষ্ঠা করার জন্য অন্যতম গুরুত্ত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কারটি করেছিলেন আরেকজন জার্মান বিজ্ঞানী হারমেন ভন হেল্মল্টজ্। ব্রিটিশ পদার্থবিজ্ঞানী টমাস ইয়ঙের প্রস্তাবিত রং সংক্রান্ত নীতি নিয়ে গবেষণা করে তিনি ইয়ং-হেল্মল্টজ্ সূত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই সূত্র দ্বারা তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে তিনটে বিভিন্ন রঙের (সবুজ, নীল ও লাল) অনুভূতির সৃষ্টি হয় মানুষের চোখের রেটিনার সাথে সংযুক্ত তিন ধরনের স্নায়ুর কর্ম-তৎপরতার ফলে। এরপর পরবর্তী আধুনিক মনোবিজ্ঞান একের পর আরেক আমাদের মন সম্পর্কীয় রহস্য উদ্‌ঘাটন করে এর জয়যাত্রা অব্যাহত রেখেছে। মনোবিজ্ঞানের বিভিন্ন মতবাদ (১) আচরণবাদ (Behaviorism) আচরণবাদের জন্ম হয়েছিল বিংশ শতকের দ্বিতীয় দশকে। আচরণবাদের মুখ্য প্রবক্তা ছিলেন জন বি.ওয়াটসন এবং বি. এফ. স্কীনার। এছাড়া, রাশিয়ার আইভান পাভলভ, বেখটার্ভ ইত্যাদি মনোবিজ্ঞানী আচরণবাদ নিয়ে বহু উল্লেখযোগ্য অবদান রেখে গেছেন। আচরণবাদীদের মতে, প্রাণীর উদ্দীপকের প্রতি প্রতিক্রিয়া জানানোর কার্যই হল আচরণ; এবং যে তত্ত্বের সহায়তায় এই আচরণের অধ্যয়ন ও বিশ্লেষণ করা হয় তাই হল আচরণবাদ। আচরণবাদী মানুষেরা কাশি, হাঁচি ইত্যাদি সাধারণ শারীরিক কার্যের থেকে আরম্ভ করে মানুষের উচ্চতম বৌদ্ধিক চিন্তা-চর্চা পর্যন্ত সকল কাজই উদ্দীপক ও প্রতিক্রিয়ার মধ্যে একপ্রকারের সংযোগ স্থাপন করে বলে বিশ্বাস করেন। আচরণবাদের দরুন ওয়াটসন মনোবিজ্ঞানের জগতে এক নতুন জোয়ার আনেন। তিনি মানুষ ও জীবজন্তুর আচরণকে এক জড়বাদী অছিলা হিসাবে মনোবিজ্ঞানের জগতে নিয়ে আসেন। (২) মনোবিশ্লেষণ বা মনঃসমীক্ষণ: বিংশ শতকের শুরুতেই সমগ্র বিশ্বকে আন্দোলিত করা একটি তত্ত্ব হল মনোবিশ্লেষণ বা মনঃসমীক্ষণ। এই তত্ত্বের প্রভাবেই চিকিৎসাবিজ্ঞানে সংযোজিত হয়েছিল এক নতুন শাখা; সেটি হল চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান বা মনোরোগ বিজ্ঞান। মনোবিজ্ঞানের জনক ছিলেন অস্ট্রিয়ার ভিয়েনা শহরের শারীরবিজ্ঞানী ডাঃ সিগমুন্ড ফ্রয়েড। ফ্রয়েডের পরে মনোবিশ্লষণের জগতে অবদান রেখে যাওয়া কয়েকজন জগতবিখ্যাত মনোবিদের ভিতর কার্ল গুষ্টাভ য়ুং, আলফ্রেড এডলার, এরিক এরিকসন উল্লেখযোগ্য। এই তত্ত্ব কেবল মনোবিজ্ঞানের জগতকেই প্রভাবিত করে ক্ষান্ত থাকেনি, এটি মানুষের মন, সমাজ, সাহিত্য, জীবনাদর্শের ওপরেও গভীরভাবে প্রভাব বিস্তার করেছিল। মানুষ নামক প্রাণীটির সম্পর্কে এই তত্ত্বই মানুষকে নতুন করে ভাবতে বাধ্য করেছিল। এই তত্ত্বই আমাদেরকে নতুন করে শেখায় যে মানুষ অমৃতের সন্তান নয়, এমনকি আগেকার পণ্ডিতদের ভাবনা-চিন্তা অনুযায়ী মানুষ যুক্তিবাদী প্রাণীও নয়। মানুষ আসলে কিছু জৈবিক প্রবৃত্তি ও আবেগের দ্বারা পরিচালিত হয়; এবং সবচেয়ে জরুরি কথাটি হল দূর-দূরান্তের গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে জানলেও মানুষ কিন্তু বেশিরভাগ নিজের বিষয়েই অন্ধ হয়ে থাকে। মনোবিশ্লেষণ মানুষের মনোজগতের বহু গোপন রহস্য আমাদের কাছে তুলে ধরেছিল। মানুষের মন সম্পর্কে আবিষ্কৃত এই অপ্রিয় কিন্তু সত্যি শোনানো কথাগুলি সেই সময়ের বহু লোক মেনে নিতে পারেনি, যদিও এমনসব কথাই জীবন সম্পর্কে উৎসুক নবপ্রজন্মকে উল্লসিতও করেছিল। যদিও মনোবিশ্লেষণবাদ প্রয়োগিক ক্ষেত্রে সফল ও সর্বগ্রহণযোগ্য, তবুও একে বিজ্ঞান বলে প্রমাণ করতে অনেক যৌক্তিক সীমাবদ্ধতা চলে আসে। এককথায় বলতে গেলে মনোবিশ্লেষণ বা ফ্রয়েডীয় মনোবিজ্ঞান মানুষের অবচেতন মনের এক দার্শনিক অনুমানভিত্তিক অধ্যয়ন। মানসিক রোগ নিরাময়, মনের অস্বাভাবিক ভাব-অনুভূতির বিশ্লেষণ, স্বপ্ন বিশ্লেষণ, নারী ও শিশুমনের বিশ্লেষণের ক্ষেত্রে ফ্রয়েডীয় মনোবিশ্লেষণ আজও প্রভাবশালী ও অপ্রতিদ্বন্দী। মনোবিজ্ঞানের শাখাসমূহ শিশু মনোবিজ্ঞান চিকিৎসা মনোবিজ্ঞান পরীক্ষণ মনোবিজ্ঞান উপদেশনা এবং নির্দেশনা মনোবিজ্ঞান শারীরবৃত্তীয় মনোবিজ্ঞান শিল্প মনোবিজ্ঞান শিক্ষা মনোবিজ্ঞান সমাজ মনোবিজ্ঞান প্রকৌশল মনোবিজ্ঞান পরিমাপন মনোবিজ্ঞান বিকাশ মনোবিজ্ঞান ব্যক্তিত্ব মনোবিজ্ঞান মানবতাবাদী মনোবিজ্ঞান ক্রীড়াক্ষেত্রে প্রয়োগ ১৯৫৫ সালে প্রখ্যাত মনোবিজ্ঞানীত্রয় - ভিক্টোরিয়া মেডভেক, স্কট ম্যাদে এবং থমাস গিলোভিচ আধুনিক অলিম্পিক ক্রীড়ায় বিপরীতধর্মী চিন্তা-ভাবনা সংবলিত প্রতিক্রিয়া গবেষণা আকারে তুলে ধরেন। তারা দেখিয়েছেন, যে সকল প্রতিযোগী ব্রোঞ্জপদক জয় করে তারা রৌপ্যপদক জয়ী ক্রীড়াবিদের তুলনায় অধিকতর সুখী। রৌপ্যপদক জয়ী ক্রীড়াবিদ মানসিক অবসাদগ্রস্ততায় ভোগেন, কেননা তারা অল্পের জন্য স্বর্ণপদক প্রাপ্তি থেকে নিজেকে বিচ্যুত করেছেন। সে তুলনায় ব্রোঞ্জপদক জয়ী খেলোয়াড় ক্রীড়া প্রতিযোগিতা থেকে কমপক্ষে একটি পদক জয়ে সক্ষমতা ও পারঙ্গমতা দেখিয়েছেন। চতুর্থ স্থান অধিকারী প্রতিযোগীকে সাধারণত কোন পদক দেয়া হয় না। নক-আউটভিত্তিক প্রতিযোগিতা হিসেবে ফিফা বিশ্বকাপ ফুটবলে পুনরায় ফুটবল খেলায় অংশগ্রহণ করে ব্রোঞ্জপদক অর্জন করতে হয়। চূড়ান্ত খেলায় পরাজিত হবার প্রেক্ষাপটে পরাজিত দলকে রৌপ্যপদক প্রদান করা হয়। আরও দেখুন মানসিক ব্যাধি মনোচিকিৎসা স্নায়ুতত্ত্ব মনোবিজ্ঞান সংক্রান্ত বিদ্যা স্নায়ুবিজ্ঞান তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Encyclopedia of Psychology A web site with all kinds of information about psychology. Psychology at the Open Directory Project. In-Mind, Quarterly Magazine for Social Psychology Citizen's Commission on Human Rights মনোবিজ্ঞান মন মূল বিষয়ের নিবন্ধ আচরণমূলক বিজ্ঞান সংজ্ঞানাত্মক আচরণীয় চিকিৎসা
https://en.wikipedia.org/wiki/Psychology
Psychology
Psychology is the scientific study of mind and behavior. Its subject matter includes the behavior of humans and nonhumans, both conscious and unconscious phenomena, and mental processes such as thoughts, feelings, and motives. Psychology is an academic discipline of immense scope, crossing the boundaries between the natural and social sciences. Biological psychologists seek an understanding of the emergent properties of brains, linking the discipline to neuroscience. As social scientists, psychologists aim to understand the behavior of individuals and groups. A professional practitioner or researcher involved in the discipline is called a psychologist. Some psychologists can also be classified as behavioral or cognitive scientists. Some psychologists attempt to understand the role of mental functions in individual and social behavior. Others explore the physiological and neurobiological processes that underlie cognitive functions and behaviors. Psychologists are involved in research on perception, cognition, attention, emotion, intelligence, subjective experiences, motivation, brain functioning, and personality. Psychologists' interests extend to interpersonal relationships, psychological resilience, family resilience, and other areas within social psychology. They also consider the unconscious mind. Research psychologists employ empirical methods to infer causal and correlational relationships between psychosocial variables. Some, but not all, clinical and counseling psychologists rely on symbolic interpretation. While psychological knowledge is often applied to the assessment and treatment of mental health problems, it is also directed towards understanding and solving problems in several spheres of human activity. By many accounts, psychology ultimately aims to benefit society. Many psychologists are involved in some kind of therapeutic role, practicing psychotherapy in clinical, counseling, or school settings. Other psychologists conduct scientific research on a wide range of topics related to mental processes and behavior. Typically the latter group of psychologists work in academic settings (e.g., universities, medical schools, or hospitals). Another group of psychologists is employed in industrial and organizational settings. Yet others are involved in work on human development, aging, sports, health, forensic science, education, and the media.
1263
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B6
মহাকাশ
মহাকাশ বা মহাশূন্য বলতে পৃথিবীর বাইরে অবস্থিত এবং খ-বস্তুসমূহের মধ্যে প্রসারিত স্থানকে বোঝায়। মহাকাশ সম্পূর্ণরূপে ফাঁকা একটি শূন্যস্থান নয়। এটিতে খুবই কম ঘনত্বের কণা থাকে যাদের সিংহভাগই হাইড্রোজেন ও হিলিয়ামের প্লাজমা দিয়ে গঠিত। এছাড়াও মহাকাশে তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণ, চৌম্বক ক্ষেত্রসমূহ, নিউট্রিনো, মহাজাগতিক ধূলি ও মহাজাগতিক রশ্মিসমূহ বিদ্যমান। মহাকাশের ভূমিরেখা তাপমাত্রা , যা মহাবিস্ফোরণের পটভূমি বিকিরণ দ্বারা নির্ধারিত। ছায়াপথসমূহের মধ্যবর্তী প্লাজমা মহাবিশ্বের প্রায় অর্ধেক ব্যারিয়নজাত (সাধারণ) পদার্থ গঠন করেছে; এটির সংখ্যা ঘনত্ব প্রতি ঘনমিটারে একটি হাইড্রোজেন পরমাণু অপেক্ষাও কম এবং এটির তাপমাত্রা বহু লক্ষ কোটি কেলভিন। পদার্থের স্থানীয় কেন্দ্রীভূত রূপগুলি ঘনীভূত হয়ে নক্ষত্র ও ছায়াপথগুলি গঠন করেছে। গবেষণায় দেখা গেছে যে বেশিরভাগ ছায়াপথের ৯০% ভর একটি অজ্ঞাত রূপে বিদ্যমান, যার নাম দেওয়া হয়েছে তমোপদার্থ; এটি অন্যান্য পদার্থের সাথে তড়িৎ-চুম্বকীয় বলসমূহের সাহায্যে নয়, কিন্তু মহাকর্ষীয় বলের মাধ্যমে আন্তঃক্রিয়া সম্পাদন করে। পর্যবেক্ষণ থেকে অনুমান করা হয় যে পর্যবেক্ষণসম্ভব মহাবিশ্বের ভর-শক্তির সিংহভাগই হল তমোশক্তি নামের একপ্রকার শূন্যস্থান শক্তি, যার প্রকৃতি এখনও ভালমতো বোঝা যায়নি। মহাবিশ্বের আয়তনের বেশিরভাগই আন্তঃছায়াপথ স্থান দ্বারা গঠিত, কিন্তু ছায়াপথ ও নক্ষত্রব্যবস্থাগুলি নিজেরাও প্রায় সম্পূর্ণরূপে শূন্যস্থান দিয়েই গঠিত। মহাকাশ ভূ-পৃষ্ঠের উপরে একটি নির্দিষ্ট উচ্চতা থেকে শুরু হয় না। প্রচলিত রীতি অনুযায়ী বিভিন্ন মহাকাশ-সংক্রান্ত চুক্তিতে ও বায়বান্তরীক্ষ-সংক্রান্ত নথিপত্র লিপিবদ্ধকরণের জন্য সমুদ্র সমতল থেকে উচ্চতায় অবস্থিত কার্মান রেখাকে মহাকাশের প্রারম্ভ বলে গণ্য করা হয়। ১৯৬৭ সালের ১০ই অক্টোবর বলবৎ হওয়া মহাকাশ চুক্তিটিতে আন্তর্জাতিক মহাকাশ আইনের পরিকাঠামোটি প্রতিষ্ঠিত হয়। এই চুক্তি অনুযায়ী মহাকাশের উপর কোনও রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বকে অসম্ভব ঘোষণা করা হয়েছে এবং সব রাষ্ট্রকে মুক্তভাবে মহাকাশ অনুসন্ধান সম্পাদন করার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। যদিও মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে বহুসংখ্যক জাতিসংঘ প্রস্তাব রচিত হয়েছে, তা সত্ত্বেও পৃথিবীর কক্ষপথে কৃত্রিম উপগ্রহ-নিরোধী অস্ত্র পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে। খ্রিস্টীয় ২০শ শতকে অধিক-উচ্চতার বেলুন উড্ডয়নের আবির্ভাব হলে মানবজাতি সর্বপ্রথম মহাকাশ অনুসন্ধান শুরু করে। এরপরে মানববাহী রকেট উড্ডয়ন এবং তারও পরে মানব যাত্রীবাহী পৃথিবী আবর্তন (Earth orbit) সম্পন্ন হয়। ১৯৬১ সালে সোভিয়েত ইউনিয়নের ইউরি গ্যাগারিন প্রথম মানব হিসেবে মহাকাশে থেকে পৃথিবী আবর্তন করেন। শূন্যস্থান ও বিকিরণজনিত কারণে রক্তমাংসের মানুষের মাধ্যমে অনুসন্ধানের জন্য মহাকাশ অত্যন্ত প্রতিকূল একটি পরিবেশ। এছাড়া অণু-অভিকর্ষ মানুষের শারীরিক প্রক্রিয়াসমূহের উপরে নেতিবাচক প্রভাব ফেলে, যার ফলে পেশীক্ষয় এবং অস্থিক্ষয় হয়। এইসব স্বাস্থ্য ও পরিবেশগত সমস্যা ছাড়া অর্থনৈতিকভাবেও মহাকাশে মানুষসহ যেকোনও বস্তু প্রেরণ করার খরচও অত্যধিক। মহাকাশে প্রবেশ করা অত্যন্ত ব্যয়বহুল বলে মানব মহাকাশ যাত্রা কেবল নিম্ন কক্ষপথে পৃথিবী আবর্তন এবং চাঁদে গমনের মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তবে এর বিপরীতে মানববিহীন মহাকাশযানগুলি সৌরজগতের সবগুলি গ্রহে পৌঁছাতে সক্ষম হয়েছে। শব্দগত ব্যাখ্যা বাংলায় নভঃ, ব্যোম ইত্যাদি শব্দেও মহাকাশকে সূচিত করা হয়। আবিষ্কার মহাশূন্য সুপ্রাচীনকাল থেকে মানুষের কৌতূহলের বিষয়। প্রত্যেক সভ্যতা ও মানুষ সবসময় মহাকাশকে কৌতূহলের দৃষ্টিতে দেখেছে। প্রাচীন সভ্যতা সমূহ ও মানুষেরা মহাশূন্যের ব্যাপারে নানা কাল্পনিক ব্যাখ্যা দিত। যথাঃ হাতির উপর উল্টানো থালা, বিশাল চাদর, পবিত্র আত্মা ও দেবতাদের বাসস্থান ইত্যাদি। প্রাচীন গ্রিক, রোমান, মিশরীও, বেবিলনীয়, ভারতীয়, চীনা, মায়া ইত্যাদি সভ্যতা মহাশূন্যকে ভিন্ন ভিন্ন ভাবে পর্যবেক্ষণ করেছেন। কিন্তু সকল সভ্যতাই মহাকাশকে বিজ্ঞানের বিষয় হিসেবে কম-বেশি গ্রহণ করেছিলো। প্রাচীনকালের মহাকাশ আবিষ্কার ও পর্যবেক্ষণ প্রাচীন গ্রিক ও রোমানরা প্রাচীন জ্যোতির্বিজ্ঞান ও পর্যবেক্ষণের ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ভুমিকা পালন করেছে। প্রাচীন গ্রীসে মহাকাশ কে দর্শনশাস্ত্রের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। তারা নক্ষত্র সমূহকে একে অপরের সাথে সংযুক্ত করে নানা রুপ দিয়েছিল এবং এগুলোর অধিকাংশের নাম গ্রিক ও রোমান দেবতাদের নামে রাখা হয়। যা এখনও বিজ্ঞানী ও মহাকাশ পর্যবেক্ষণকারীদের নানা ভাবে সাহায্য করছে। চাঁদ এবং খালি চোখে দৃশ্যমান গ্রহগুলোর গতিপথও এর অন্তর্ভুক্ত। প্রাচীন গ্রিক ও অন্যান্য সভ্যতা সমূহ এর মাধ্যমে রাশিচক্র আবিষ্কার করে। নক্ষত্র, চাঁদ, ধুমকেতু ইত্যাদি প্রাচীনকাল থেকে পর্যবেক্ষণ করে আসছে মানুষ। ঋতুর পরিবর্তন, দিন-রাত, নক্ষত্রের স্থান পরিবর্তন (পরবর্তীতে যা গ্রহ প্রমাণিত হয়) ইত্যাদির হিসাব ও গাণিতিক ব্যাখ্যার সাহায্যে সুপ্রাচীনকাল ও প্রাচীনকালে অনেক সমৃদ্ধি লাভ করে। মধ্যযুগের মহাকাশ আবিষ্কার ও পর্যবেক্ষণ মধ্যযুগে দূরবীক্ষণ যন্ত্রর আবিষ্কারের ফলে এর ব্যাপক প্রসার ঘটে। হান্স লিপারশে (Hans Lippershey) এবং জাকারিয়াস জেন্সেন (Zacharias Janssen) এর নির্মিত দূরবীক্ষণ যন্ত্র আরও উন্নত করে তুলেন গ্যালিলিও গ্যালিলি। গ্যালিলি তার দুরবিনের মাধ্যমে বৃহস্পতি গ্রহর উপগ্রহ এবং শনি গ্রহর বলয় পর্যবেক্ষণ করতেপেরেছিলেন। ১৬১১ সালে ইয়োহানেস কেপলার একটি দূরবীক্ষণ যন্ত্র নির্মাণ করেন যা দ্বারা জ্যোতির্বিজ্ঞানএ নতুন যুগের সূচনা হয়। এ সময় বুধগ্রহ, শুক্রগ্রহ, মঙ্গলগ্রহ, বৃহস্পতিগ্রহ, শনিগ্রহ সহ অগণিত নক্ষত্র ও ধূমকেতু পর্যবেক্ষণ এবং আবিষ্কার করা হয়। মধ্যযুগের শেষ পর্যায় ইউরেনাস গ্রহ, নেপচুন গ্রহ, প্লুটো গ্রহ আরও অনেক নক্ষত্র ও ধূমকেতু আবিষ্কার, পর্যবেক্ষণ ও অনুসরণ করা হয়। মধ্যযুগের শেষ পর্যায় পদার্থ, রাসায়ন ও গণিত ব্যাপক ভাবে ব্যবহার করা হয় জ্যোতিষশাস্ত্রে। মহাজাগতিক বস্তুর গঠন, আকার-আকৃতি, বায়ু মণ্ডল (গ্যাসীয় পদার্থ সমূহ), কক্ষ পথ, আহ্নিক গতি, বার্ষিক গতি ইত্যাদি নির্ণয়র জন্য এসব শাস্ত্রের ব্যাপক ব্যবহার শুরু হয়। এর আগে শুধু গণিতশাস্ত্র ব্যবহার হত। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান (মহাকাশ আবিষ্কার ও পর্যবেক্ষণ) ১৯৬৯ খ্রীস্টাব্দের ১৬ই জুলাই জ্যোতির্বিজ্ঞান ও মহাকাশ আবিষ্কারের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ অভিযান, প্রথম মনুষ্যবাহী মহাকাশযান অ্যাপোলো ১১, যা ২০ জুলাই চাঁদে অবতরণ করে। এই অভিযানে অংশনেন দলপ্রধান নীল আর্মস্ট্রং, চালক মাইকেল কলিন্স, এডুইন অল্ড্রিন জুনিয়র এবং কমান্ড মডিউল। পরবর্তীতে আবিষ্কার হয়েছে প্লুটো সহ অন্যান্য বামন গ্রহ, নেহারিকা, ধূমকেতু, কৃষ্ণগহ্বর।বিজ্ঞান ও অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে তৈরি হয়েছে শক্তিশালী কৃত্রিম উপগ্রহ, দূরবীক্ষণ যন্ত্র ইত্যাদি। যথাঃ হাবল টেলিস্কোপ। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান মহাবিশ্বকে দূরবীক্ষণ যন্ত্র ছাড়া আমাদের চোখের সামনে তুলে ধরেছে। আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞান বেশ কয়েকজন বিজ্ঞানীর কারণে পরিপূর্ণতা লাভ করেছে। তাদের মধ্যে স্টিফেন হকিং (Stephen Hawking) জাম কেনন (Annie Jump Cannon), মারিয়া মিশেল (Maria Mitchell), সি.ডব্লীউ থমবারগ(C.W. Tombaugh) হানরিটা সোয়ান লেভিট (Henrietta Swan Leavitt) প্রমুখ। উপাদানসমূহ প্রাথমিক বিবেচনায় মহাকাশূন্যে পদার্থ এবং প্রতিপদার্থ রয়েছে। তবে বিশদ বিবেচনায় মহাকাশূন্যের উপাদানসমূহ হলো: তেজস্ক্রীয় পদার্থ (যেমন: তারকা বা তারা বা সূর্য, ধূমকেতু) অতেজষ্ক্রীয় পদার্থ (যেমন: গ্রহ, উপগ্রহ, বামন গ্রহ, উল্কা) গ্যাসীয় পদার্থ (যেমন: হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, নাইট্রোজেন, সালফার ইত্যাদি) প্রতিপদার্থ (যেমন: এন্টিপ্রোটন, এন্টিইলেক্ট্রন) পরিবেশ তাপমাত্রা মানুষের শরীরে প্রতিক্রিয়া সীমা আইনত অবস্থান মহাশূন্য ও অক্ষের মাঝে পার্থক্য অঞ্চলসমূহ জিওস্পেস আন্তঃগ্রহসম্বন্ধী আন্তঃনাক্ষত্রিক আন্তঃছায়াপথবর্তী আরো দেখুন মহাকাশ তথ্যসূত্র জ্যোতির্বিজ্ঞান মহাকাশ পরিবেশ শূন্যস্থান
https://en.wikipedia.org/wiki/Outer_space
Outer space
Outer space (or simply space) is the expanse that exists beyond Earth's atmosphere and between celestial bodies. It contains ultra-low levels of particle densities, constituting a near-perfect vacuum of predominantly hydrogen and helium plasma, permeated by electromagnetic radiation, cosmic rays, neutrinos, magnetic fields and dust. The baseline temperature of outer space, as set by the background radiation from the Big Bang, is 2.7 kelvins (−270 °C; −455 °F). The plasma between galaxies is thought to account for about half of the baryonic (ordinary) matter in the universe, having a number density of less than one hydrogen atom per cubic metre and a kinetic temperature of millions of kelvins. Local concentrations of matter have condensed into stars and galaxies. Intergalactic space takes up most of the volume of the universe, but even galaxies and star systems consist almost entirely of empty space. Most of the remaining mass-energy in the observable universe is made up of an unknown form, dubbed dark matter and dark energy. Outer space does not begin at a definite altitude above Earth's surface. The Kármán line, an altitude of 100 km (62 mi) above sea level, is conventionally used as the start of outer space in space treaties and for aerospace records keeping. Certain portions of the upper stratosphere and the mesosphere are sometimes referred to as "near space". The framework for international space law was established by the Outer Space Treaty, which entered into force on 10 October 1967. This treaty precludes any claims of national sovereignty and permits all states to freely explore outer space. Despite the drafting of UN resolutions for the peaceful uses of outer space, anti-satellite weapons have been tested in Earth orbit. The concept that the space between the Earth and the Moon must be a vacuum was first proposed in the 17th century after scientists discovered that air pressure decreased with altitude. The immense scale of outer space was grasped in the 20th century when the distance to the Andromeda galaxy was first measured. Humans began the physical exploration of space later in the same century with the advent of high-altitude balloon flights. This was followed by crewed rocket flights and, then, crewed Earth orbit, first achieved by Yuri Gagarin of the Soviet Union in 1961. The economic cost of putting objects, including humans, into space is very high, limiting human spaceflight to low Earth orbit and the Moon. On the other hand, uncrewed spacecraft have reached all of the known planets in the Solar System. Outer space represents a challenging environment for human exploration because of the hazards of vacuum and radiation. Microgravity has a negative effect on human physiology that causes both muscle atrophy and bone loss.
1264
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%AC%E0%A6%B8%E0%A6%BE
ব্যবসা
অর্থশাস্ত্রের পরিভাষায় ব্যবসায় এক ধরনের সামাজিক কর্মকাণ্ড (বিজ্ঞান) যেখানে নির্দিষ্ট সৃষ্টিশীল ও উৎপাদনীয় লক্ষ্যকে সামনে রেখে বৈধভাবে সম্পদ উপার্জন বা লাভের উদ্দেশ্যে লোকজনকে সংগঠিত করা হয় ও তাদের উৎপাদনীয় কর্মকাণ্ড রক্ষণাবেক্ষণ করা হয়। ব্যক্তির মুনাফা পাওয়ার আশায় পণ্যদ্রব্য ও সেবাকর্ম উৎপাদনের মাধ্যমে উপযোগ সৃষ্টি এবং মানুষের বস্তুগত ও অবস্তুগত অভাব পূরণের লক্ষ্যে সেগুলো বণ্টন এবং এর সহায়ক সবরকম বৈধ, ঝুঁকিবহুল ও ধারাবাহিক কার্যকে ব্যবসা বলে। আইনানুসারে, ব্যবসা বলতে সেই সংগঠনকে বুঝায়, যা অর্থের বিনিময়ে ভোক্তাকে পণ্য বা সেবা কিংবা, দুটো সুবিধাই প্রদান করে। পুঁজিবাদ অর্থনীতিতে ব্যবসায় লক্ষণীয়ভাবে বিদ্যমান এবং গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এখানে প্রায়, সব ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান ব্যক্তিমালিকানায় পরিচালিত হয়, যা গঠন করা হয় মূলত মুনাফা অর্জন করে মালিকের পুঁজি বৃদ্ধির জন্যে। ব্যবসায় মুনাফার জন্য ব্যক্তি মালিকানার ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান গুলোর মালিক বা পরিচালকবৃন্দের মূল উদ্দেশ্যের মধ্যে একটি হলো, ঝুঁকি গ্রহণ ও কার্যের বিপরীতে বিনিয়োগকৃত পুঁজি ফেরত পাওয়া। মুনাফাবিহীন বা রাষ্ট্র মালিকানার অধীনেও ব্যবসায় করা যায়। "ব্যবসায়" শব্দের আক্ষরিক অর্থ হচ্ছে "ব্যস্ত থাকা" অর্থাৎ হয় ব্যক্তিগতভাবে অথবা সমষ্টিগত ভাবে বাণিজ্যিক ভাবে, সমর্থনযোগ্য ও লাভজনক কাজে ব্যস্ত থাকা। সুবিধামত "ব্যবসায়" শব্দটির কমপক্ষে তিনটি ব্যবহার রয়েছে - একটি নির্দিষ্ট কোম্পানি বা প্রতিষ্ঠানকে বুঝাতে একক ভাবে ব্যবহার হয়। একটি নির্দিষ্ট পণ্য বা সেবার বাজার ক্ষেত্র বুঝাতে সাধারনত ব্যবহার হয়; যেমন - ফুলের ব্যবসায় মিশ্র অর্থে, বা বৃহৎ অর্থে পণ্য ও সেবার সরবরাহ করার জন্যে সকলপ্রকার কার্য সম্পাদন করে এমন দল বা গোষ্ঠীকে বুঝায়। ব্যবসায়ের ধরন মালিকানার ভিত্তিতে ব্যবসায় মূলত পাঁচ ধরনের হয়। যথা: একমালিকানা ব্যবসায় অংশীদারি ব্যবসায় যৌথ মূলধনী অথবা কোম্পানি ব্যবসায় সমবায় সমিতি রাষ্ট্রীয় ব্যবসায় আরও দেখুন হিসাববিজ্ঞান বিজ্ঞাপন ব্যাংক ব্যবসায়ী পুঁজিবাদ বাণিজ্য ক্রয়বিক্রয় কোম্পানি ই-বাণিজ্য অর্থনীতি ব্যবসায় উদ্যোগ অর্থসংস্থান বিক্রয়াধিকার প্রদান মানব সম্পদ শিল্প (অর্থশাস্ত্র) নবীকরণ বীমা মেধা সম্পদ বেকারত্ব শ্রম অর্থশাস্ত্র ম্যানেজমেন্ট ইনফরমেশন সিস্টেম উৎপাদন বিপণন অর্থ (টাকা) কৌশলগত পরিকল্পনা কর তথ্যসূত্র ব্যবসা মূল বিষয়ের নিবন্ধ উদ্যোগ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান
https://en.wikipedia.org/wiki/Business
Business
Business is the practice of making one's living or making money by producing or buying and selling products (such as goods and services). It is an activity or enterprise entered into for profit." A business entity is not necessarily separate from the owner and the creditors can hold the owner liable for debts the business has acquired. The taxation system for businesses is different from that of the corporates. A business structure does not allow for corporate tax rates. The proprietor is personally taxed on all income from the business. A distinction is made in law and public offices between the term business and a company such as a corporation or cooperative. Colloquially, the terms are used interchangeably. Corporations are distinct from with sole proprietors and partnerships. They are separate legal entities and provide limited liability for their owners and members. They are subject to corporate tax rates. They are also more complicated and expensive to set up, but offer more protection and benefits for the owners and members.
1265
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97
যোগাযোগ
যোগাযোগ হল আদান প্রদানের উপায়। মানুষ থেকে মানুষ বা যন্ত্র থেকে যন্ত্রে তথ্য আদান প্রদান হতে পারে। মাধ্যম-ও তথ্য হতে পারে তড়িৎচৌম্বক বিকিরণ বা রেডিও-ওয়েভ। এছাড়াও যোগাযোগের মাধ্যমে মনের ভাব আদান প্রদান করা হয়। যোগাযোগ করার জন্য যে ধরনে মিডিয়া ব্যবহার করা হয় তা নিচে দেওয়া হলঃ ভিজুয়্যাল যোগাযোগ ধ্বনির সাহায্যে যোগাযোগ স্পর্শের সাহায্যে যোগাযোগ গন্ধের সাহায্যে যোগাযোগ লেখার সাহায্যে যোগাযোগ যোগাযোগ ভার হতে পারে কথ্য বা অ-কথ্য। অনেকসময় অনেক ভাবে যোগাযোগ হয়। শুধু প্রাণী জগতে মানুষেরা যোগাযোগ করে না। প্রতেক্য পশু পাখি যোগাযোগ করতে পারে। যোগাযোগ কীভাবে কাজ করে যোগাযোগ বলতে অনেকেই কথা বলা বা দেখা করাকে বুঝে থাকি। যদি বই থেকে উদৃতি দিতে চাই, তাহলে মনের ভাব প্রকাশের জন্য অন্যের কাছে বার্তার আদান প্রদানকে যোগাযোগের প্রাথমিক পরিচয় হিসেবে বলা যায়।কিন্তু এর বাহিরেও একটু মজার আলাপ রেয়েছে। চলুন দেখে নেয়া যাক, ১. কথা না বলেই যোগাযোগ করা প্রচলিত ধারণামতে মানুষ শুধু কথা বলেই যোগাযোগ করতে পারে বলে জেনে এসেছি। আসলে কথা না বলেই আমরা সবচেয়ে কার্যকর যোগাযোগ করে থাকি। যোগাযোগ শুধু কথা বলার মত সাংকেতিক মাধ্যমে সিমাবদ্ধ নয়।কথা বলা শুধু একটি মাধ্যম মাত্র। যোগাযোগ বাস্তবায়ন হওয়ার জন্য বিপরীত দিকে অবস্থিত মানুষটির ফিডব্যাকই যথেষ্ট। এই ফিডব্যাক কথার মাধ্যমেও হতে পারে অথবা যোগাযোগকৃতদের মাঝে প্রচলিত সিম্বল দিয়েও হতে পারে। যেমন একজন ছেলে আরেকজন মেয়ের দিকে তাকিয়ে আছে। তাদের মাঝে কথা না হলেও অনুভূতির আদানপ্রদান পর্যায়ক্রমিকভাবে ঘটেই চলেছে কিন্ত। ২.যোগাযোগ একটি নেটওয়ার্ক সিস্টেম মোবাইলগুলো টাওয়ারের সাথে যুক্ত থাকতে সবসময় নেটওয়ার্ক বাউন্ডারি বানিয়ে রাখে। আশেপাশের টাওয়ারগুলোর সাথে নিজে নিজে যুক্ত হয়ে যায়।  মানুষের যোগাযোগ সিষ্টেমটাও ঠিক এরকমি। মানুষ সার্বক্ষণিক একটি নেটওয়ার্ক জালের মাঝে বিচরণ করে আর নিজের অজান্তেই বিপরীত দিকের মানুষগুলোর সাথে যোগাযোগ করে থাকে। গ্রামের রাস্থা দিয়ে হেটে গেলে বলতে হয়না যে আমি শহর থেকে এসেছি। পর্যায়ক্রমিকভাবে যে তরঙ্গের মত বার্তাগুলো ছড়িয়ে পড়ছে এটাই এর কারণ। ৩. সকল যোগাযোগের একটি উদ্দেশ্য থাকে আমারা প্রচিত ধারণায় শুধু কথা বলেই যোগাযোগ রক্ষা করা যায় বলে জেনে এসেছি। কিন্তু কথা না বলেও যোগাযোগ রক্ষা করা যায়। আর এই সকল যোগাযোগই একটা নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যের জন্য হয়ে থাকে। ছোটভাবে বলতে গেলে, যোগাযোগ শুরুই হয় একটি নিদৃষ্ট উদ্দেশ্য নিয়ে। এই উদ্দেশ্যগুলো হতে পারে নিজের অবস্থান বা উপস্থিতি প্রকাশের জন্য। তবে যোগাযোগের মৌলিক উদ্দেশ্য বিপরীত দিকের (যোগাযোগককৃত) মানুষের বুঝতে পারা। এছাড়াও যোগাযোগের মাধ্যমে চিন্তাধারা, অনুভূতি, এবং জানার পরিধিরর পরিবর্তন করা যায়। ৪. সফল যোগাযোগ আমাদের সার্বক্ষণিক যোগাযোগ চক্রে সকল যোগাযোগ আবার সফল হয় না। একটি সফল যোগাযোগের জন্য বিপরীত দিকে অবস্থিত ব্যক্তির ফিডব্যাক আবশ্যক। কারণ যোগাযোগ হলো ভাবের আদান প্রোদান। বিপরীত দিক থেকে ফিডব্যাক ছাড়া এই যোগাযোগ সম্ভব নয়। তবে এই ফিডব্যাক শুধুমাত্র বিপরীত দিকের ব্যক্তির বুঝতে পারার মাধ্যমেই সম্পন্ন হতে পারে। ৫.সিম্বল যোগাযোগের মাধ্যম হিসেবে কাজ করে যোগাযোগ একটি চলমান প্রক্রিয়া। আর এই চলমান প্রক্রিয়াকে নিয়মিত করতে সিম্বল ব্যবহার করা হয়। যেমন ভাষা, লেখা,অঅঙ্গভঙ্গি এগুলো প্রচলিত সিম্বল। তবে এই সিম্বল আমাদের সামাজিক অবস্থান, চলাফেরা, এলাকাভেদে আলাদা আলাদা অর্থ বহন করতে পারে।যেমন একই সিম্বল এলাকার ভিন্নতার কারণে ভিন্ন অর্থ প্রকাশ করতে পারে। একটা কথা প্রচলিত আছে, এক দেশের বুলি আরেক দেশের গালি। আরও দেখুন একবিংশ শতাব্দীর দক্ষতা আন্তঃসাংস্কৃতিক যোগাযোগ সংকেত (যোগাযোগ ব্যবস্থা) অতীন্দ্রিয় দূরানুভূতি তথ্যসূত্র যোগাযোগ মূল বিষয়ের নিবন্ধ el:Επικοινωνία eo:Komunikadteĥnikoj fa:ارتباطات he:תקשורת ja:通信 ru:Общение uk:Комунікація zh:通信
https://en.wikipedia.org/wiki/Communication
Communication
Communication is commonly defined as the transmission of information. Its precise definition is disputed and there are disagreements about whether unintentional or failed transmissions are included and whether communication not only transmits meaning but also creates it. Models of communication are simplified overviews of its main components and their interactions. Many models include the idea that a source uses a coding system to express information in the form of a message. The message is sent through a channel to a receiver who has to decode it to understand it. The main field of inquiry investigating communication is called communication studies. A common way to classify communication is by whether information is exchanged between humans, members of other species, or non-living entities such as computers. For human communication, a central contrast is between verbal and non-verbal communication. Verbal communication involves the exchange of messages in linguistic form, including spoken and written messages as well as sign language. Non-verbal communication happens without the use of a linguistic system, for example, using body language, touch, and facial expressions. Another distinction is between interpersonal communication, which happens between distinct persons, and intrapersonal communication, which is communication with oneself. Communicative competence is the ability to communicate well and applies to the skills of formulating messages and understanding them. Non-human forms of communication include animal and plant communication. Researchers in this field often refine their definition of communicative behavior by including the criteria that observable responses are present and that the participants benefit from the exchange. Animal communication is used in areas like courtship and mating, parent–offspring relations, navigation, and self-defense. Communication through chemicals is particularly important for the relatively immobile plants. For example, maple trees release so-called volatile organic compounds into the air to warn other plants of a herbivore attack. Most communication takes place between members of the same species. The reason is that its purpose is usually some form of cooperation, which is not as common between different species. Interspecies communication happens mainly in cases of symbiotic relationships. For instance, many flowers use symmetrical shapes and distinctive colors to signal to insects where nectar is located. Humans engage in interspecies communication when interacting with pets and working animals. Human communication has a long history and how people exchange information has changed over time. These changes were usually triggered by the development of new communication technologies. Examples are the invention of writing systems, the development of mass printing, the use of radio and television, and the invention of the internet. The technological advances also led to new forms of communication, such as the exchange of data between computers.
1266
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B8%E0%A6%B0%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0
সরকার
সরকার বা শাসনব্যবস্থা () হলো কোনো দেশের সর্বোচ্চ সংস্থা ও কর্তৃপক্ষ যার মাধ্যমে দেশটির শাসন কার্য পরিচালিত হয়। গণতান্ত্রিক শাসনব্যবস্থায় সরকার জনগণের নির্বাচিত প্রতিনিধি যেমন সংসদ সদস্যদের দ্বারা গঠিত হয়। সরকারের মৌলিক দায়িত্ব জনগণের অভিপ্রায় অনুযায়ী দেশের নিরাপত্তা বিধান করা, সমাজের শান্তি বজায় রাখা, মানুষের জান-মাল রক্ষা করা এবং বিবাদের ক্ষেত্রে বিচারকার্য পরিচালনা করা। সরকার তার ওপর আরোপিত দায়িত্বসমূহ পালনের স্বার্থে রাজস্ব আহরণ করে এবং শাসনকার্য পরিচালনা ও উন্নয়নমূলক কাজের জন্য তা ব্যয় করে থাকে। সাধারণত "সরকার" শব্দটির দ্বারা একটি সাধারণ সরকার বা সার্বভৌম রাষ্ট্রকে বোঝায়। সরকার স্থানীয়, জাতীয় বা আন্তর্জাতিক হতে পারে। যদিও বাণিজ্যিক, শিক্ষাগত, ধর্মীয়, বা অন্যান্য বিধিবদ্ধ সংস্থাগুলিও নিজস্ব পরিচালন কর্তৃপক্ষ কর্তৃক শাসিত হয়। এই জাতীয় কর্তৃপক্ষ বোর্ড অফ ডিরেক্টর, ম্যানেজ‍ার, গভর্নর নামে পরিচিত; এগুলিকে প্রশাসন (যেমন বিদ্যালয় প্রশাসন) বা কাউন্সিল অফ এল্ডার্স (যেমন খ্রিষ্টান চার্চে) নামেও চিহ্নিত করা হয়ে থাকে। সরকারের আকার অঞ্চল বা উদ্দেশ্য অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন হয়। সংগঠনের আয়তন বৃদ্ধি হলে সরকারের জটিলতাও বাড়ে। তাই ছোটো শহর বা ছোটো-মাঝারি বেসরকারি সংস্থাগুলিতে আধিকারিকের সংখ্যা বড়ো বড়ো বহুজাতিক কর্পোরেশনের তুলনায় কম রাখা হয়। বড়ো সংস্থায় বহুমুখী দপ্তর ব্যবস্থা ও প্রশাসনের ক্রমপর্যায়ে লক্ষিত হয়। জটিলতা বাড়লে সরকারের কাজ-কর্মের প্রকৃতিও জটিল হয়ে পড়ে। তাই আনুষ্ঠানিক নীতি ও কার্যপদ্ধতি ঘোষণারও প্রয়োজন হয়। সরকারের ধরন নৈরাজ্যবাদ – এটি এমন একটি রাজনৈতিক দর্শন যা রাষ্ট্রকে অপ্রয়োজনীয়, ক্ষতিকর ও অবাঞ্ছনীয় মনে করে এবং রাষ্ট্রহীন সমাজের সপক্ষে মতপ্রকাশ করে। কর্তৃত্ববাদী সরকার – কর্তৃত্ববাদী সরকার কোনো প্রজাতন্ত্র বা যুক্তরাষ্ট্রে রাষ্ট্রের সর্বময় কর্তৃত্বের সপক্ষে মতপ্রকাশ করে। এটি অনির্বাচিত শাসকদের দ্বারা নিয়ন্ত্রিত একটি ব্যবস্থা, যাঁরা কিছুটা ব্যক্তিগত স্বাধীনতা দিয়ে থাকেন। সাংবিধানিক রাজতন্ত্র – এই জাতীয় সরকারে একটি রাজতন্ত্র বিদ্যমান; কিন্তু উক্ত রাজতন্ত্রের ক্ষমতা আইন বা ঘোষিত সংবিধানের দ্বারা সীমাবদ্ধ। উদাহরণ: যুক্তরাজ্য। সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র – এই জাতীয় সরকারের ক্ষমতা আইন বা আনুষ্ঠানিক সংবিধান দ্বারা সীমাবদ্ধ এবং এই সরকার সংশ্লিষ্ট দেশের জনসংখ্যার একটি ক্ষুদ্র অংশ দ্বারা নির্বাচিত। উল্লেখ্য, প্রাচীন স্পার্টা ঘোষিতভাবে ছিল একটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র; কিন্তু সেদেশের অধিকাংশ মানুষই ভোটদানের অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকতেন। আবার প্রথম যুগের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও ছিল গণতান্ত্রিক দেশ; কিন্তু ক্রীতদাসদের সেযুগে ভোটদানের অধিকার ছিল না। গণতন্ত্র – গণতন্ত্র হল এমন একটি সরকার যা দেশের জনসংখ্যার বৃহত্তম অংশ দ্বারা নির্বাচিত। এই সরকার সাংবিধানিক রাজতন্ত্র বা সাংবিধানিক প্রজাতন্ত্র দুইই হতে পারে। গণতন্ত্রের ব্যক্তির ভোটদানের অধিকার তার সামাজিক মর্যাদা বা সম্পদের উপর নির্ভরশীল নয়। একনায়কতন্ত্র – একক ব্যক্তি স্বেচ্ছায় শাসিত দেশের সরকার। স্বৈরাচারী শাসক সাধারণত বলপূর্বক ক্ষমতা দখল করেন। (আরও দেখুন স্বৈরতন্ত্র ও রাষ্ট্রতন্ত্র) রাজতন্ত্র – এমন ব্যক্তির শাসন যিনি শাসনক্ষমতা উত্তরাধিকারসূত্রে প্রাপ্ত হন। সংকীর্ণ গোষ্ঠীতন্ত্র – একই স্বার্থবিশিষ্ট ছোটো ছোটো গোষ্ঠী বা পরিবারের শাসন। ধনিকতন্ত্র – ধনবান শ্রেণির শাসন। দিব্যতন্ত্র – ধর্মীয় নেতাদের শাসনতন্ত্র। সর্বনিয়ন্ত্রণবাদী সরকার – এই জাতীয় সরকার সরকার ও ব্যক্তিগত জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে নিজ কর্তৃত্ব আরোপ করে। আইনানুগমনবাদী সরকার – এই জাতীয় সরকার আইনের শাসনকে চূড়ান্ত মনে করে; আইনমান্যকারীদের পুরস্কৃত করে ও আইনভঙ্গকারীদের কঠিন শাস্তি দেয়। আরও দেখুন পৌরনীতি প্রাকৃতিক এবং আইনগত অধিকার স্থানীয় সরকার রাজনৈতিক অর্থনীতি রাষ্ট্র নির্বাচনী ব্যবস্থা পাদটীকা তথ্যসূত্র Kenoyer, J. M. Ancient Cities of the Indus Civilization. Oxford: Oxford University Press, 1998 Possehl, Gregory L. Harappan Civilization: A Recent Perspective. New Delhi: Oxford University Press, 1993 Indus Age: The Writing System. Philadelphia: University of Pennsylvania Press, 1996 “Revolution in the Urban Revolution: The Emergence of Indus Urbanisation,” Annual Review of Anthropology 19 (1990): 261–282. বহিঃসংযোগ সরকার সরকারের রূপ সরকার পদ্ধতি সরকারি সংস্থা রাজনৈতিক পরিভাষা রাজনৈতিক মতবাদ মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Government
Government
A government is the system or group of people governing an organized community, generally a state. In the case of its broad associative definition, government normally consists of legislature, executive, and judiciary. Government is a means by which organizational policies are enforced, as well as a mechanism for determining policy. In many countries, the government has a kind of constitution, a statement of its governing principles and philosophy. While all types of organizations have governance, the term government is often used more specifically to refer to the approximately 200 independent national governments and subsidiary organizations. The main types of modern political systems recognized are democracies, totalitarian regimes, and, sitting between these two, authoritarian regimes with a variety of hybrid regimes. Modern classification system also include monarchies as a standalone entity or as a hybrid system of the main three. Historically prevalent forms of government include monarchy, aristocracy, timocracy, oligarchy, democracy, theocracy, and tyranny. These forms are not always mutually exclusive, and mixed governments are common. The main aspect of any philosophy of government is how political power is obtained, with the two main forms being electoral contest and hereditary succession.
1267
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0
রাষ্ট্র
রাষ্ট্র বলতে এমন এক রাজনৈতিক সংগঠনকে বোঝায় যা কোন একটি ভৌগোলিক এলাকা ও তৎসংশ্লিষ্ট এলাকার জনগণকে নিয়ন্ত্রণ করার সার্বভৌম ক্ষমতা রাখে। রাষ্ট্র সাধারণত একগুচ্ছ প্রতিষ্ঠানের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে। এসব প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ হিসেবে সংশ্লিষ্ট ভৌগোলিক সীমার ভেতর বসবাসকারী সমাজের সদস্যদের শাসনের জন্য নিয়ম-কানুন তৈরি করে। যদিও একথা ঠিক যে রাষ্ট্র হিসেবে মর্যাদা পাওয়া না পাওয়া বহুলাংশে নির্ভর করে, রাষ্ট্র হিসেবে তার উপর প্রভাব রাখা ভিন্ন ভিন্ন রাষ্ট্রের স্বীকৃতির উপর। ম্যাক্স ওয়েবারের প্রভাববিস্তারী সঙ্গানুযায়ী রাষ্ট্র হচ্ছে এমন এক সংগঠন যা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে আইনানুগ বলপ্রয়োগের সব মাধ্যমের উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ রাখে, যাদের মধ্যে রয়েছে সশস্ত্রবাহিনী, নাগরিক, সমাজ, আমলাতন্ত্র, আদালত এবং আইন-শৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাম্প্রতিককালে রাষ্ট্র গঠন প্রক্রিয়ার বিষয়ে মতভিন্নতার কারণে তাত্ত্বিক মহলে বেশ বিতর্ক সৃষ্টি হয়েছে এই আলোচনাকে কেন্দ্র করে যে ঠিক কীভাবে একটি “সার্থক রাষ্ট্র” এর অভ্যুদয়কে সমর্থন করা যেতে পারে। সংজ্ঞা ব্যাপকার্থে সরকার বা প্রাচীন-আধুনিক সব অনুষ্ঠান-প্রতিষ্ঠানকেই রাষ্ট্র প্রত্যয়টির অংশ হিসেবে ধরা হয়। আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার উল্ল্যেখযোগ্য সংখ্যক বৈশিষ্ট্য রয়েছে যাদের সমন্বিত পদ্ধতির অংশ হয়ে ওঠাটা প্রথম স্পষ্টভাবে দেখা যায় ১৫ শতক নাগাদ। আর ঠিক সেসময়ই রাষ্ট্র প্রত্যয়টি তার আধুনিক অর্থ পরিগ্রহ করে। তাই রাষ্ট্র প্রত্যয়টি প্রায়ই নির্দিষ্ট করে শুধু আধুনিক রাজনৈতিক কাঠামোকে বোঝাতে ব্যবহৃত হয়। যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় অঙ্গরাষ্ট্রগুলোর স্বতন্ত্র পরিচয় থাকলেও তারা সম্পূর্ণভাবে সার্বভৌম নয়। এদের কর্তৃত্বের সীমা সেই সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষের সিদ্ধান্তের উপর নির্ভর করে যা একই সাথে আংশিক বা অঙ্গরাষ্ট্রগুলোর সমান সার্বভৌমত্ব থাকা সংশ্লিষ্ট যুক্তরাষ্ট্রটির রূপরেখা নির্ধারণ করে। রাষ্ট্র কাঠামোর রূপ বিভিন্ন স্তরে বিভিন্নভাবে সংগঠিত হতে পারে, যেমন – স্থানীয়/পৌর, প্রাদেশিক/আঞ্চলিক, যুক্তরাষ্ট্রীয় এমনকি সাম্রাজ্য বা জাতি-সংস্থার মত আন্তর্জাতিক রূপেও তা থাকতে পারে। চলতি ধারণা অনুযায়ী দেশ, জাতি ও রাষ্ট্র প্রত্যয়গুলি প্রায়ই এমনভাবে ব্যবহৃত হয় যেন তারা সমার্থক; কিন্তু আরো সুচারু ব্যবহারের ক্ষেত্রে তাদের পার্থক্য সুস্পষ্টভাবে উপস্থাপন করা যেতে পারে দেশ বলতে ভৌগোলিক এলাকা বোঝানো হয়। জাতি বলতে সেই জনগণকে বোঝানো হয়, যাদের রীতিনীতি, পূর্বপুরুষ, ইতিহাস ইত্যাদি একই। যদিও বিশেষণ হিসেবে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক শব্দদুটি দিয়ে সেইসব বিষয়কে বোঝানো হয় যেগুলি স্পষ্টতই রাষ্ট্র-সংশ্লিষ্ট; যেমন জাতীয় রাজধানী, আন্তর্জাতিক আইন। রাষ্ট্র সেইসব শাসনতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান ও তাদের সহযোগী প্রতিষ্ঠানসমূহকে বোঝায় যাদের একটি নির্দিষ্ট এলাকা ও জনগণের উপর সার্বভৌম কর্তৃত্ব আছে। আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি কন্সটিটুটিভ থিওরি অফ স্টেটহুড (রাষ্ট্রের অঙ্গোপাদানগত তত্ত্ব) কন্সটিটুটিভ থিওরি অফ স্টেটহুড - উনিশ শতকে বিকাশ লাভ করা এই তত্ত্ব ব্যাখ্যা করে যে কোনটি রাষ্ট্র আর কোনটি রাষ্ট্র নয়। এই তত্ত্বানুযায়ী – কোন রাষ্ট্রের আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলার বাধ্যবাধকতা নির্ভর করে অন্যান্য রাষ্ট্রের স্বীকৃতির উপর। একারণে সদ্যোজাত রাষ্ট্র তৎক্ষণাৎ আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের অংশ হয়ে উঠতে পারেনা বা আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে বাধ্য হতে পারেনা। একই সাথে স্বীকৃত রাষ্ট্রগুলোও ওই রাষ্ট্রের ব্যাপারে কোন সিদ্ধান্ত নিতে আন্তর্জাতিক আইন মেনে চলতে বাধ্য থাকবেনা। এই তত্ত্বের উল্লেখ্যযোগ্য একটি সমালোচনা হচ্ছে এই যে এটি সেসব ক্ষেত্রে বিভ্রান্তি তৈরি করে যেসব ক্ষেত্রে স্বীকৃত রাষ্ট্রসমূহের একাংশ নতুন রাষ্ট্রটিকে স্বীকৃতি দেয় কিন্তু আরেক অংশ দেয় না। অন্যান্য রাষ্ট্রের স্বীকৃতি আদায় করে নেয়াটা সংশ্লিষ্ট নতুন রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব, সমালোচনার জবাবে এই মত দেন তত্ত্বের প্রস্তাবকদের কেউ কেউ। যাহোক, একটি রাষ্ট্র অন্য একটি রাষ্ট্রকে স্বীকৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে যেকোন মানদণ্ড বেছে নিতে পারে। অনেক ক্ষেত্রে কেবলমাত্র স্বার্থসংশ্লিষ্টতা থাকলেই একটি রাষ্ট্র নতুন রাষ্ট্রটিকে স্বীকৃতি দিতে পারে। মোন্তেবিদেও সম্মেলন স্বীকৃতি পাওয়া প্রসঙ্গে ক্ষুদ্রজাতিসমূহ কর্তৃক উপস্থাপিত দলিলগুলোর অন্যতম একটি হলো মোন্তেবিদেও সমঝোতা। মোন্তেবিদেও সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয় ১৯৩৩ সালের ২৬ ডিসেম্বর যুক্তরাষ্ট্র, হন্ডুরাস, এল সালভাদর, ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্র, হাইতি, আর্জেন্টিনা, ভেনেজুয়েলা, উরুগুয়ে, প্যারাগুয়ে, মেক্সিকো, পানামা, বলিভিয়া, গুয়েতেমালা, ব্রাজিল, ইকুয়েডর, নিকারাগুয়া, কলম্বিয়া, চিলি, পেরু এবং কিউবার সম্মতিতে। যদিও এই সমঝোতা কোন আন্তর্জাতিক গ্রহণযোগ্যতা পায়নি। মোন্তেবিদেও সমঝোতায় চারটি শর্ত আছে যা রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি পেতে ইচ্ছুক “রাষ্ট্র”কে পূরণ করতে হবে – স্থায়ী জনগণ নির্ধারণকৃত এলাকা সরকার অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক তৈরির সক্ষমতা এই শর্তগুলো পূরণ সহজসাধ্য বলে, মন্তেবিদেও সমঝোতা কখনোই আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে গ্রহণযোগ্য হয়নি, বরং বেশিরভাগ দেশ আদর্শ হিসেবে কন্সটিটুটিভ থিওরি অফ স্টেটহুডকেই ব্যবহার করে। ব্যুৎপত্তিগত অর্থ বাংলা ভাষায় রাষ্ট্র শব্দটি ইংরেজি স্টেট শব্দের পারিভাষিক শব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয়। ইংরেজি স্টেট শব্দটি মূলত ল্যাটিন স্ট্যাটাস শব্দ থেকে এসেছে যার অর্থ অবস্থা। যা কখনো আইনানুগভাবে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে এমন ব্যক্তিদের অস্তিত্ব থাকা, কখনো বা রাজার অবস্থা আবার কখনো বা প্রজাতন্ত্রের অবস্থা বোঝাতে ব্যবহৃত হয়েছে। প্রায়োগিক ও আইনি দৃষ্টিতে রাষ্ট্র শব্দের অর্থ রাষ্ট্র শব্দের প্রায়োগিক ও আইনি উভয় রকমের অর্থ আছে। অর্থাৎ, রাষ্ট্র হিসেবে কোন কিছুর অস্তিত্বকে প্রায়োগিক দৃষ্টিতে বা আইনি দৃষ্টিতে অথবা উভয় দিক থেকেই ব্যাখ্যা করা যেতে পারে। প্রায়োগিক দিক থেকে দেখতে গেলে, ম্যাক্স ওয়েবারের প্রভাবশালী সঙ্গানুযায়ী- এটি এমন একটি সংস্থা , নির্দিষ্ট এলাকার ভেতর আইনসিদ্ধ বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে যার রয়েছে একচ্ছত্র আধিপত্য। এমন কর্তৃপক্ষ সংশ্লিষ্ট এলাকায় নিজস্ব আইনি আদেশ আরোপ করতে পারে, এমনকি যদি সেই কর্তৃপক্ষ আইনগতভাবে অপরাপর রাষ্ট্র দ্বারা, রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃত নাও হয় তবুও। উদাহরণ হিসেবে সোমালিল্যান্ডের সোমালি অঞ্চলের কথা বলা যেতে পারে। আইনি দিক থেকে দেখতে গেলে, কোন কর্তৃপক্ষ আন্তর্জাতিক আইনে রাষ্ট্র হতে পারে যদি অপরাপর রাষ্ট্রসমূহ তাকে রাষ্ট্র হিসেবে স্বীকৃতি দেয়, এমনকি তেমন ক্ষেত্রেও যেখানে সংশ্লিষ্ট এলাকার উপর আইনসিদ্ধ বলপ্রয়োগের একচ্ছত্র কর্তৃত্ব আসলে তার নেই। শুধুমাত্র আইনগতভাবে স্বীকৃত রাষ্ট্রই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সমঝোতায় অংশ নিতে পারে। রাষ্ট্র, সরকার পদ্ধতি ও রাজনৈতিক কাঠামো রাষ্ট্রের ধারণাকে প্রাসঙ্গিক অপর দুটি বিষয় থেকে স্পষ্টভাবে পৃথক করা যেতে পারে, যে দুটিকে প্রায়ই রাষ্ট্রের সমার্থক মনে করায় বিভ্রান্তি তৈরি হয়। এই বিষয় দুটি হচ্ছে সরকারপদ্ধতি (গণতন্ত্র বা স্বৈরতন্ত্র) এবং রাজনৈতিক কাঠামো। সরকার পদ্ধতি রাষ্ট্রের একটি মাত্র বৈশিষ্ট্য তুলে ধরে – সেই প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে রাষ্ট্রের সর্বোচ্চ রাজনৈতিক পর্যায়ের বিভিন্ন কর্তা নির্ধারিত হয় এবং একই সাথে তাদের পারস্পারিক সম্পর্কের স্বরূপ ও জনগণের সাথে তাদের সম্পর্কের স্বরূপ নির্ধারিত হয়। এটি রাষ্ট্রের অন্যান্য দিকগুলো তুলে ধরে না যেগুলো রাষ্ট্রের প্রতিদিনকার কার্যক্রমে গুরুত্বপূর্ণ স্থান দখল করে আছে। উদাহরণ হিসেবে আমলাতন্ত্রের মানের কথা বলা যেতে পারে। দুটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র পরস্পরের চেয়ে যথেষ্ট ভিন্ন হতে পারে যদি তাদের একটির প্রশিক্ষিত ও কার্যকর আমলাতন্ত্র বা বেসামরিক প্রশাসন থাকে কিন্তু অপরটির তা না থাকে। সাধারণভাবে বলতে গেলে রাষ্ট্র প্রত্যয়টি রাজনৈতিক ক্ষমতার হাতিয়ারগুলোকে বোঝায়। অপর দিকে সরকারপদ্ধতি বলতে সেই প্রক্রিয়াকে বোঝায় যার মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট হাতিয়ারগুলো ব্যবহৃত হয় এবং নিয়োজিত হয়। কোন কোন তাত্ত্বিকের মতে রাষ্ট্র প্রত্যয়টি অযথার্থ এবং রাষ্ট্র প্রত্যয়টির বদলে আরো বেশি অর্থবহ – রাজনৈতিক কাঠামো প্রত্যয়টি ব্যবহার করা উচিত। রাজনৈতিক কাঠামো প্রত্যয়টি সামগ্রিকভাবে সব সামাজিক কাঠামোকে নির্দেশ করে যারা যৌথভাবে পারস্পারিকভাবে সম্পর্কিত সামাজিক সিদ্ধান্তগুলি নির্ধারণ করে। আধুনিক সময়ে যা রাজনৈতিক শাসনতন্ত্র , রাজনৈতিক দল এবং আরো অন্যান্য সংস্থাকে নির্দেশ করে। ফলে রাজনৈতিক কাঠামো, রাষ্ট্রের তুলানায় ব্যাপকার্থ ধারণ করে। রাষ্ট্রের ঐতিহাসিক বিবর্তন প্রাথমিক স্তরের রাষ্ট্রের অস্তিত্ব দেখতে পাওয়া যায় যখনই ক্ষমতাকে টেকসইভাবে কেন্দ্রীভূত করা যায়। “কৃষি ও কলম” প্রায় সব ক্ষেত্রেই এই প্রক্রিয়ার সাথে যুক্ত। কৃষি, উদ্বৃত্ত ফসল উৎপাদন ও তার সঞ্চয়কে সম্ভব করে তুলেছে। এটাই পর্যায়ক্রমে এমন এক শ্রেণীর উদ্ভব সম্ভব করে তুলেছে যারা কৃষি উদ্বৃত্তের মজুত নিয়ন্ত্রণ ও রক্ষা করতো। একই সাথে এই কাজে সময় ব্যয় করায় তারা ক্রমেই তাদের নিজেদের জীবিকানির্বাহী কর্মকাণ্ড থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে। এছাড়াও রয়েছে লেখনীর বিকাশের ব্যাপারটি, যা প্রয়োজনীয় তথ্যের একত্রিত উপস্থাপন সম্ভব করেছে। অনেক রাষ্ট্রচিন্তাবিদ বিশ্বাস করেন যে রাষ্ট্রের মূলসূত্র আদিবাসীদের সংস্কৃতিতে প্রোথিত। সে সংস্কৃতি মানুষের বোধের সাথে সাথে সেই কাঠামোকে উন্নত করেছে যা আদি পুরুষতান্ত্রিক ক্ষুদ্রসমাজের নজির, যেখানে দুর্বলের উপর সবলের দাপটই মুখ্য ছিলো। যাহোক, নৃবিজ্ঞানীদের মতে আদিবাসী গোষ্ঠীভিত্তিক সমাজে উল্ল্যেখ করা মত কোন কেন্দ্রীয় কর্তৃপক্ষ ছিল না। আর সেটাই সমাজগুলোকে বহুস্তরবিশিষ্ট করে তুলেছিলো। প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সভ্যতায় রাষ্ট্রচিন্তা পশ্চিমে রাষ্ট্রের ইতিহাস শুরু হয় গ্রিক ও রোমান সভ্যতাকালে। সেইসময়কালে রাষ্ট্রকে বিভিন্ন রূপে দেখতে পাওয়া যায়। যদিও তাদের কোনটিকেই আধুনিক রাষ্ট্রের সাথে মেলানো যায় না। তখন স্বাধীন শাসকদের এমন এক শ্রেণী ছিল যাদের ক্ষমতা মূলত রাজার ধর্মীয় কর্মকাণ্ড ও কেন্দ্রীয় সেনাবাহিনীতে তার নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার উপর নির্ভরশীল ছিলো। সেখানে রোমান সাম্রাজ্যের মত আমলাতন্ত্রনির্ভর বৃহৎ সাম্রাজ্যও ছিলো যা রাজার ধর্মীয় প্রভাব দ্বারা ছিল কম প্রভাবিত। কার্যকর সেনাবাহিনী ও আইনি প্রতিষ্ঠানসমূহ এবং সুদৃঢ় অবস্থানে থাকা অভিজাততন্ত্রের উপরই নির্ভরতা ছিলো বেশি। মনে করা হয় যে প্রাচীন গ্রিক ও রোমান সভ্যতায় সবচেয়ে বড় রাজনীতি সংক্রান্ত উদ্ভাবন ছিলো গ্রিক নগর-রাষ্ট্র এবং রোমান প্রজাতন্ত্র। চতুর্দশ শতকেরও আগে গ্রিক নগর-রাষ্ট্র তার মুক্ত বাসিন্দাদের জন্য নাগরিকত্ব প্রদান করে। এথেন্সে এই অধিকার স্বীকৃতি পায় গণতান্ত্রিক সরকার পদ্ধতির প্রত্যক্ষ রূপের মাধ্যমে যা পরবর্তীতে ইতিহাস ও রাষ্ট্র চিন্তায় দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলে। অন্যদিকে রোমে প্রতিষ্ঠিত হয় প্রজাতন্ত্র, যা রোমান অভিজাতদের দ্বারা প্রভাবিত সদস্যসভা দ্বারা শাসিত হত। রোমান রাজনৈতিক কাঠামো, আইন ও নিয়মতান্ত্রিক শাসনতন্ত্রের উন্নতিতে অবদান রাখে এবং একই সাথে অধিকার-কর্তব্যের ব্যক্তিগত ও সামাজিক ক্ষেত্রের মাঝে সুস্পষ্ট সীমারেখা টেনে দেয়। পশ্চিমে সামন্তসমাজ থেকে আধুনিক রাষ্ট্রের উদ্ভব পশ্চিমে সুনির্দিষ্টভাবে আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার উন্মেষ ও বিকাশ ঘটে রোমান সাম্রাজ্যের অবলুপ্তি ঘটার মাধ্যমে। এর ফলে সাম্রাজ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশে বিভাজিত হয়ে কেন্দ্রের নিয়ন্ত্রণবিহীন স্থানীয় জমিদারদের ব্যক্তিগত নিয়ন্ত্রণে চলে যায়, যাদের রাজনৈতিক, আইনি ও সামরিক সিদ্ধান্তগুলো ছিলো স্থানীয় উৎপাদন কাঠামোর বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নির্ধারিত। মার্ক্সবাদীদের মতে এমন পরিস্থিতিতেই সমাজের অর্থনৈতিক কাঠামো স্থানীয় পর্যায়ে রাষ্ট্রের সাথে সঙ্গতিপূর্ণ হয়ে ওঠে। সামন্তযুগের ইউরোপে একজন স্বাধীন শাসক আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা কাঠামোর উপরে থাকলেও তার একক ইচ্ছা পুরো শাসনব্যবস্থা পরিচালনার জন্য যথেষ্ট ছিল না। বরং কেন্দ্রীয় খাজনা আদায় ব্যবস্থার অনুপস্থিতির কারণে স্বাধীন শাসক ও জমিদারদের ভেতর পারস্পারিক নির্ভরতার সম্পর্ক ছিলো। এ অবস্থা ম্যাক্স ওয়েবার বর্ণিত রাষ্ট্র এর সাথে পুরোপুরি মেলে না যেহেতু এমতাবস্থায় না আইন তৈরি আর না তো বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে রাজার একচ্ছত্র অধিকা ছিলো। আইনের তৈরির ব্যাপারে গির্জার প্রভাব ছিলো আর বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে “নোবল্‌” পদাধিকারীদের প্রভাব ছিলো। খাজনা আদায়ের ক্ষেত্রে রাজা ও অন্যান্য ক্ষমতা উৎসগুলোর ভেতর টানাপোড়েন এর জের ধরে স্ট্যান্ডেস্ট্যাট এর জন্ম হয় যেখানে সংসদ এর মত আলোচনার পরিবেশে রাজা ও ভিন্ন ভিন্ন গোষ্ঠীর মধ্যে আইনি ও অর্থনৈতিক বিষয়ে দেন-দরবারের মীমাংসা হত। যদিও অনেক ক্ষেত্রেই দেন-দরবারের ব্যাপারে রাজারই প্রাধান্য থাকতো। আধুনিক রাষ্ট্র ব্যবস্থার উন্মেষধারা নির্দিষ্ট ভূখণ্ডে সর্বোচ্চ রাজনৈতিক কর্তৃপক্ষ তৈরির মাধ্যমে রাষ্ট্রের জনসম্পৃক্ত হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয় ইউরোপে প্রাতিষ্ঠানীকিকরণের ক্রমোন্নতির হাত ধরে, যার সূচনা হয় পনের শতকের শেষভাগে, যা স্বৈরতন্ত্র এবং পুঁজিবাদের উত্থানের সাথে সাথে সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছায়। ইউরোপের পরিবারতান্ত্রিক রাজ্যগুলো ( ইংল্যান্ডের, স্পেনের এবং ফ্রান্সের) রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের উপর কেন্দ্রীয় নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রণীত বিভিন্ন পরিকল্পনার আত্মীকরণ করে যা ক্রামাগত আধুনিক রাষ্ট্রের প্রাতিষ্ঠানিক বৈশিষ্ট্যের অনেকগুলিকেই সামনে নিয়ে আসে। ইউরোপিয়ান রাজতন্ত্রগুলো ক্রমান্নয়ে ক্ষমতার অন্যান্য উৎসগুলোর কোন কোন্টিকে দমন আবার কোন কোনটিকে সহযোগী হিসেবে গ্রহণ করায় (চার্চ, সীমিত নোবলিটি) ক্ষমতার কেন্দ্রীকরণ একই সাথে রাজনৈতিক ক্ষমতা কর্তব্যের সীমানা স্পষ্ট করে এঁকে দেয়। প্রায় ক্ষেত্রেই সীমানা নিয়ে বিবাদ ছিলো যে সামন্ত শাসনে, তার বদলে গড়ে ওঠে এককেন্দ্রীক রাষ্ট্রের, যার নির্দিষ্ট এলাকার উপর ব্যাপক ক্ষমতা প্রতিষ্ঠিত হয়। এই প্রক্রিয়া, ব্যাপকভাবে কেন্দ্রীভূত এবং ক্রমশ আমলাতন্ত্র নির্ভরপ্রবণ বিভিন্ন প্রকার একনায়কতান্ত্রিক রাজতন্ত্রের জন্ম দেয়। সতের এবং আঠারো শতকে এটি ঘটে, যখন রাষ্ট্র ব্যবস্থার সমকালীন বৈশিষ্ট্যগুলো কাঠামোবদ্ধ রূপ লাভ করে। এতে অন্তর্ভুক্ত হয় নিয়মিত সেনাবাহিনী, কেন্দ্রীয় কর ব্যবস্থা, স্থায়ী দূতাবাসগুলোর সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক নীতির উন্নয়ন । সাংস্কৃতিক ও জাতীয়তার অভিন্নতা আধুনিক রাষ্ট্রের উথ্থানে ব্যাপকবিস্তারী ভূমিকা রেখেছে। একনায়কতান্ত্রিক সময়কাল থেকেই রাষ্ট্রের সংগঠন বহুলাংশে জাতীয়তা নির্ভর। একথা স্পষ্ট হওয়া দরকার যে জাতীয় রাষ্ট্র আর জাতি-রাষ্ট্র এক বিষয় নয়। এমন কি নৃতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্যের ঐক্য সবচেয়ে বেশি এমন সমাজেও রাষ্ট্র ও জাতির বৈশিষ্ট্য সমভাবে সঙ্গতিপূর্ণ হয়ে ওঠে না। ফলে প্রায়ক্ষেত্রেই ষেয়ার্ড সিম্বল ও জাতীয় পরিচয়ের উপর জোর দেয়ার মাধ্যমে রাষ্ট্র জাতীয়বাদের প্রচার ও প্রসারে কাজ করে। এই সময়কালেই রাষ্ট্র ব্যাপারটি বর্তমান অর্থের কাছাকাছি অর্থে রাষ্ট্র তত্ত্বের আলোচনায় ব্যবহৃত হতে থাকে। ১৫৩২ সালে প্রকাশিত দ্য প্রিন্স গ্রন্থে, আধুনিক অর্থে নির্দিষ্ট ভূ-খণ্ডে সার্বভৌম সরকারক অর্থে রাষ্ট্রের ব্যবহারের জন্য কৃতিত্ব দেয়া হয় ম্যাকিয়াভেলিকে। যদিও ব্রিটিশ চিন্তাবিদ থমাস হব্স ও জন লক এবং ফরাসি চিন্তাবিদ জেন বডিনের হাত ধরেই রাষ্ট্রের বর্তমান অর্থ পূর্ণরূপে প্রতিষ্ঠিত হয়। বর্তমানকালের অধিকাংশ রাষ্ট্রেই ম্যাক্স ওয়েবারের পলিটিক্স এ্যাজ ভোকেশন-এ বর্ণিত সংজ্ঞার মধ্যেই পড়ে। ওয়েবারের মতে আধুনিক রাষ্ট্র নির্দিষ্ট ভূ-খণ্ডের ভেতর বলপ্রয়োগের সব মাধ্যমের উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ কায়েম করে। বলপ্রয়োগের এই যে একচ্ছত্র ক্ষমতা, তার আবার বিশেষ ধরনের। কারণ একে আবার আমধারণা অনুযায়ী আইনসিদ্ধ হতে হবে যে আইন ব্যক্তি স্বার্থানু্যায়ী প্রণিত নয়। আবার এমন রাষ্ট্রেরও অস্তিত্ব আছে যা ওয়েবারের সঙ্গার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়। নির্দিষ্ট এলাকায় বলপ্রয়োগের মাধ্যমের উপর একচ্ছত্র নিয়ন্ত্রণ নেই বা সেই বলপ্রয়োগের আমধারণা অনু্যায়ী আইনি ভিত্তি নেই এমন রাষ্ট্রও আছে যাদেরকে সামন্তসমাজের মত অন্যান্য কাঠামো থেকে পৃথক করা যায় আমলাতন্ত্রের উপর তাদের নির্ভরতা এবং বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে জাতীয়তাবাদকে নীতি হিসেবে গ্রহণ করার বৈশিষ্ট্যের কারণে। মার্ক্সবাদী তাত্ত্বিকেরা আধুনিক রাষ্ট্রের উদ্ভবকে ব্যাখ্যা করেন সামাজিক শ্রেণীগুলোর ভেতর উপস্থিত শ্রেণী সংঘাতের ধারণার উপর ভিত্তি করে। রাষ্ট্র ও নাগরিক সমাজ আধুনিক রাষ্ট্রের সাথে নাগরিক সমাজের সংযুক্ত-বিযুক্ত থাকা প্রসঙ্গে থমাস হব্স, জে. জে. রোসাও, ইমানুয়েল কান্ট এর মত ধ্রুপদী চিন্তাবিদেরা যেখানে রাষ্ট্র ও সমাজের পরিচয় নির্দিষ্ট করার কাজে মনোযোগ দিয়েছেন, সেখানে জি. ডাব্লুউ. এফ. হেগেল ও অ্যালেক্সিস ডি টোকভিল থেকে শুরু করে আধুনিক রাষ্ট্রচিন্তাবিদেরা বরং দু’টি ভিন্ন ভিন্ন সত্ত্বা হিসেবে তাদের মধ্যকার সম্পর্কের স্বরূপ নিরূপণে মনোযোগ দিয়েছেন। রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডল ১৯ শতকের শেষভাগ থেকে পৃথিবীর আবাসযোগ্য সমগ্র ভূমি কম-বেশি নির্ধারিত সীমানা দ্বারা বিভক্ত হয়ে বিভিন্ন রাষ্ট্রের নামে চিহ্নিত হয়ে যায়। আগে বেশ বড় বড় এলাকা হয় নির্দাবিকৃত ছিল না হয় অনাবাসকৃত ছিল অথবা যাযাবরদের এমন আবাসস্থল ছিল যা রাষ্ট্র হিসেবে সংগঠিত ছিল না। বর্তমানে ২০০ এর ও বেশি রাষ্ট্রকে নিয়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় গঠিত যাদের সিংহভাগই জাতিসংঘের সদস্য দেশ। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তাত্ত্বিকদের মতে এই রাষ্ট্রগুলো এমন একটি ব্যবস্থাপনার ভেতর আছে যেখানে রাষ্ট্র নিজে কোন সিদ্ধান্ত নেয়ার আগে অপরাপর রাষ্ট্রের প্রতিক্রিয়ার কথা বিবেচনা করে। এদিক থেকে দেখতে গেলে আন্তঃ ও বহিঃ নিরাপত্তার ব্যাপারে ও বলপ্রয়োগের ক্ষেত্রে রাষ্ট্র উভয় সংকটে থাকে। সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় বলতে এমন রাষ্ট্রসমূহের গোষ্ঠীকে বোঝায় যারা তাদের সম্পর্ক পরিচালনার জন্য বিধি, কার্যপ্রণালী ও প্রতিষ্ঠান স্থাপন করেছে। একইভাবে আন্তর্জাতিক আইন, কূটনীতি, আনুষ্ঠানিক রেজিম এবং সংগঠনগুলোর ভিত্তি তৈরি হয়েছে। রাষ্ট্র এবং অধিজাতীয়তাবাদ বিশ শতকের শেষভাগ থেকে পৃথিবীর অর্থনীতিতে বিশ্বায়নের প্রভাব, শ্রম ও মূলধনের প্রবাহ এবং বহুসংখ্যক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের উদ্ভবের যৌথ প্রভাবে রাষ্ট্রসমূহের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেয়ার সুযোগ সীমিত হয়ে গিয়েছে। স্বাধীন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে এই সীমাবদ্ধতার প্রকৃষ্ঠ উদাহরণ হল পশ্চিম ইউরোপ যেখানে আন্তঃরাষ্ট্রীয় ঐক্যের জন্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন। যদিও ১৬ শতক থেকে এখনো রাষ্ট্রই বিশ্বের রাজনৈতিক একক। ফলে রাষ্ট্রকেই রাজনৈতিক পঠন পাঠনের মূল কেন্দ্রীয় বিষয় বলে মনে করা হয় এবং এর সংজ্ঞা নিয়েই তাত্ত্বিকদের মাঝে পাণ্ডিত্বপূর্ণ বিতর্ক সবচেয়ে বেশি হয়। রাষ্ট্র ও আন্তর্জাতিক আইন আন্তর্জাতিক সম্পর্কের সাম্প্রতিক প্রবণতা ও আইন অনুযায়ী একটি রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব নির্ভর করে ঐ রাষ্ট্রের, রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে দাবী করার ব্যাপারে কূটনৈতিক স্বীকৃতি থাকা না থাকার উপর। স্বীকৃতি ও সার্বভৌমত্বের মাত্রা ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে। রাষ্ট্র হওয়ার জন্য আইনি শর্তাবলী অবশ্য পালনীয় নয়। প্রায় ক্ষেত্রেই রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণে আইনকে পাশ কাটিয়ে যাওয়া হয়েছে। এ প্রসঙ্গে প্রায়ই যে দলিলের কথা উল্লেখ করা হয় তা হলো ১৯৩৩ সালের মন্টেভিডিও সমঝোতার প্রথম ধারা যাতে আছেঃ আন্তর্জাতিক আইনের একটি অংশগ্রহণকারী পক্ষ হিসেবে রাষ্ট্রকে নিম্নোক্ত শর্তাবলী পূরণ করতে হবে- ক. স্থায়ী জনগণ খ. নির্ধারণকৃত এলাকা গ. সরকার ঘ. অন্যান্য রাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক তৈরির সক্ষমতা আরও দেখুন সার্বভৌম রাষ্ট্রসমূহের তালিকা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ রাষ্ট্রবিজ্ঞান রাষ্ট্র ব্যবস্থার প্রকারভেদ মূল বিষয়ের নিবন্ধ রাজনৈতিক ভূগোল রাষ্ট্রবিজ্ঞানের পরিভাষা দেশের প্রশাসনিক উপবিভাগের ধরন
https://en.wikipedia.org/wiki/State_(polity)
State (polity)
A state is a political entity that regulates society and the population within a territory. Government is considered to form the fundamental apparatus of contemporary states. A country often has a single state, with various administrative divisions. A state may be a unitary state or a some type of federal union; in the latter type, the term "state" is sometimes used to refer to the federated polities that make up the federation, and they may have some of the attributes of a sovereign state, except being under their federation and without the same capacity to act internationally. (Other terms that are used in such federal systems may include "province", "region" or other terms.) For most of prehistory people lived in stateless societies. The earliest forms of states arose about 5,500 years ago. Over time societies became more stratified and developed institutions leading to centralised governments. These gained state capacity in conjunction with the growth of cities, which was often dependent on climate, and economic development, with centralisation often spurred on by insecurity and territorial competition. Over time, a variety of forms of states developed, which used many different justifications for their existence (such as divine right, the theory of the social contract, etc.). Today, the modern nation state is the predominant form of state to which people are subject. Sovereign states have sovereignty; any ingroup's claim to have a state faces some practical limits via the degree to which other states recognize them as such. Definitions of a state are disputed. According to sociologist Max Weber: a "state" is a polity that maintains a monopoly on the legitimate use of violence, although other definitions are common. Absence of a state does not preclude the existence of a society, such as stateless societies like the Haudenosaunee Confederacy that "do not have either purely or even primarily political institutions or roles". The degree and extent of governance of a state is used to determine whether it has failed.
1269
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%A7
যুদ্ধ
যুদ্ধ হলো রাজ্য, সরকার, সমাজ বা আধাসামরিক বাহিনী যেমন ভাড়াটে সৈন্য, বিদ্রোহী এবং যে কোনো প্রকারের সামরিক বাহিনীর মধ্যে একটি তীব্র সশস্ত্র সংঘর্ষ। এক্ষেত্রে সাধারণত নিয়মিত বা অনিয়মিত সামরিক বাহিনীর ব্যবহারের ফলস্বরুপ চরম হিংস্রতা, আগ্রাসন, ধ্বংসলীলা এবং বহুসংখ্যক মৃত্যু দেখা যায়। অন্যদিকে, যুদ্ধবিগ্রহ বলতে যুদ্ধের সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলিকে বা যুদ্ধ সম্পর্কিত ক্রিয়াকলাপ বা বিভিন্ন প্রকারের যুদ্ধকে বোঝানো হয়ে থাকে। কোনো যুদ্ধ পূর্ণভাবে বৈধ সামরিক লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে সীমাবদ্ধ নাও হতে পারে এবং এর ফলে প্রচুর অসামরিক এবং সাধারণ মানুষের হতাহতের ঘটনা ঘটতে পারে। যুদ্ধবিদ্যাকে কখনও কখনও পোলেমোলজি বলা হয়, গ্রীক পোলেমোস থেকে যার অর্থ "যুদ্ধ", এবং-লজি, যার অর্থ "অধ্যয়ন"। যদিও যুদ্ধবিশারদরা যুদ্ধকে মানব প্রবৃত্তির সার্বজনীন এবং আদিম দিক হিসাবে দেখেন, কিছু মানুষ একে নির্দিষ্ট সামাজিক-সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক বা পরিবেশগত পরিস্থিতির ফলাফল বলে মনে করেন। ব্যুৎপত্তি "যুধ্‌" একটি সংস্কৃত ক্রিয়ামূল যার অর্থ "লড়াই করা বা যুদ্ধ করা"। "যুধ্"‌ ক্রিয়ামূলের সাথে "ক্ত" কৃৎ-প্রত্যয় যুক্ত হয়েছে, যার অর্থ "অতীতে সংঘটিত হয়েছে"। অর্থ্যাৎ যুদ্ধ = যুধ্‌ + ক্ত। প্রত্যয়টি যুক্ত হবার সময় ‌এর "ক্" লুপ্ত হয়ে ক্রিয়ামূলের অন্ত্যে অবস্থিত "ধ্‌" ও প্রত্যয়ের "ত" একত্রে মিলে "দ্ধ" গঠন করেছে। ইতিহাস প্রাগৈতিহাসিক যুদ্ধের প্রাচীনতম প্রমাণটি হলো জেবেল সাহাবাতে অবস্থিত একটি মেসোলিথিক কবরস্থান, যা আনুমানিক প্রায় ১৪,০০০ বছরের পুরোনো। সেখানকার কঙ্কালগুলির প্রায় পঁয়তাল্লিশ শতাংশই ভয়ানক মৃত্যুর চিহ্ন প্রদর্শন করে। প্রায় ৫,০০০ বছর আগে, যখন থেকে রাজ্যগুলির উত্থান শুরু হয়েছে, তখন থেকেই বিশ্বের বেশিরভাগ অংশে সামরিক ক্রিয়াকলাপ দেখা গেছে। বারুদের আবিষ্কার এবং প্রযুক্তিগত উন্নয়ন আধুনিক পন্থার যুদ্ধবিগ্রহের পথপ্রদর্শক। কন‌ওয়ে ডব্লিউ. হেনডারসনের মতে, "একটি উৎস অনুসারে, খ্রিস্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দ থেকে বিংশ শতাব্দীর শেষের মধ্যে ১৪,৫০০ যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছে, যেখানে মাঝের শান্তিপূর্ণ ৩০০ বছর বাদ দিলে ৩.৫ বিলিয়ন মানুষের মৃত্যু হয়েছে।" এই অনুমানের একটি প্রতিকূল পর্যালোচনা এর প্রবক্তাদের নিম্নলিখিত সম্পর্কে উল্লেখ করেছে: "তাছাড়া, হয়তো যুদ্ধে হতাহতের সংখ্যাটা অসম্ভব বেশি মনে হয়েছিল, তাই তিনি 'প্রায় ৩,৬৪০,০০০,০০০জন লোক যুদ্ধে কিংবা যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট রোগে নিহত হয়েছিল'- পরিবর্তে লিখেছেন 'প্রায় ১,২৪০,০০০,০০০ জন লোক...নিহত হয়েছিল।'" নিম্নসংখ্যার পরিসংখ্যানটি অধিক বিশ্বাসযোগ্য, তবে খ্রিষ্টপূর্ব ৪৮০ অব্দ থেকে ২০০২ খ্রিষ্টাব্দের মধ্যে সংঘটিত গণহিংসার ১০০টি মারাত্মক ঘটনা (কমপক্ষে ৩০০,০০০ থেকে সর্বোচ্চ ৬৬ মিলিয়ন হতাহতের সংখ্যাবিশিষ্ট যুদ্ধ এবং মানবসৃষ্ট দুর্যোগ) বিবেচনা করা হলে, যেখানে সর্বমোট প্রায় ৪৫৫ মিলিয়ন লোকের প্রাণ যায়, উক্ত পরিসংখ্যানটির উচ্চতর হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি । আদিম যুদ্ধগুলির ফলস্বরুপ প্রায় ১৫.১% মৃত্যু এবং ৪০০ মিলিয়ন লোক হতাহতের শিকার হয়েছে বলে অনুমান করা হয়। একে খ্রিষ্টপূর্ব ৩৫০০ অব্দ থেকে বিংশ শতাব্দীর শেষভাগ পর্যন্ত যে ১,২৪০ মিলিয়ন লোক মারা গেছে, তার সাথে যোগ করা হলে, মানবজাতির ঐতিহাসিক ও প্রাগৈতিহাসিক সময়ের যুদ্ধে মোট ১,৬৪০,০০০,০০০ জন লোক নিহত হয়েছে (যুদ্ধের কারণে সৃষ্ট দুর্ভিক্ষ ও অন্যান্য দুর্যোগে মৃতের সংখ্যাসহ)। তুলনামুলকভাবে বিংশ শতাব্দীতে সংক্রামক রোগের কারণে আনুািক ১,৬৮০,০০০ জন মানুষের মৃত্যু ঘটেছে। ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক লরেন্স এইচ. কিলে তাঁর ওয়ার বিফোর সিভিলাইজেশন ব‌ইতে বলেন, ইতিহাসের পরিচিত সমাজগুলোর প্রায় ৯০-৯৫% অনিয়মিত যুদ্ধে লিপ্ত ছিল এবং অনেকে নিয়মিত যুদ্ধ‌ও করত। যুদ্ধের প্রকারভেদ অসমমিতিক যুদ্ধ হল সামরিক ক্ষমতা বা আকারের যুদ্ধরতদের মধ্যে একটি যুদ্ধ বা প্রতিযোগিতা। জৈবিক যুদ্ধ বা জীবাণু যুদ্ধ হচ্ছে অস্ত্র হিসেবে জৈবিক বিষ বা সংক্রামক এজেন্ট যেমন ব্যাকটেরিয়া, ভাইরাস এবং ছত্রাকের ব্যবহার। রাসায়নিক যুদ্ধ হচ্ছে মারণাস্ত্র হিসেবে রাসায়নিক পদার্থ ব্যবহার। রাসায়নিক অস্ত্র হিসাবে বিষাক্ত গ্যাস প্রধানত প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ব্যবহৃত হয়েছিল, এবং এর ফলে আনুমানিক ১ লক্ষেরও বেশি বেসামরিক নাগরিক সহ এক মিলিয়নেরও বেশি হতাহতের ঘটনা ঘটেছিল। ঠান্ডা যুদ্ধ বা স্নায়ুযুদ্ধ হল প্রত্যক্ষ সামরিক সংঘাত ছাড়াই একটি তীব্র আন্তর্জাতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতা, কিন্তু এটির একটি টেকসই হুমকি সহ, উচ্চ স্তরের সামরিক প্রস্তুতি, ব্যয় এবং উন্নয়ন সহ, এবং পরোক্ষ উপায়ে সক্রিয় সংঘাত জড়িত হতে পারে।যেমন: অর্থনৈতিক যুদ্ধ, রাজনৈতিক যুদ্ধ, গোপন অপারেশন, গুপ্তচরবৃত্তি, সাইবারওয়ারফেয়ার বা প্রক্সি যুদ্ধ। প্রচলিত যুদ্ধ হয় দুটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের মাঝে তবে পারমাণবিক অস্ত্র, জৈব অস্ত্র অথবা রাসায়নিক অস্ত্র কম ব্যবহৃত হয় বা হয়না। সাইবারওয়ারফেয়ার একটি জাতি-রাষ্ট্র বা আন্তর্জাতিক সংস্থা কর্তৃক আক্রমণ এবং অন্য দেশের তথ্য ব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করার চেষ্টা করে। বিদ্রোহ হল কর্তৃত্বের বিরুদ্ধে একটি বিদ্রোহ, এর বাইরে যারা বিদ্রোহে অংশ নিচ্ছে তারা বিদ্রোহী (আইনযুক্ত যোদ্ধা) হিসাবে স্বীকৃত নয়।একটি বিদ্রোহ পাল্টা -অভ্যুত্থানের মাধ্যমে লড়াই করা যেতে পারে ও জনসংখ্যার সুরক্ষার ব্যবস্থা দ্বারা এবং ক্ষমতাসীন শাসনের বিরুদ্ধে বিদ্রোহীদের দাবিকে দুর্বল করার লক্ষ্যে বিভিন্ন ধরনের রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে বিরোধিতা করা । তথ্য যুদ্ধ হল তথ্য সম্পদ এবং সিস্টেমের বিরুদ্ধে, চারটি গুরুত্বপূর্ণ অবকাঠামো (বিদ্যুৎ গ্রিড, যোগাযোগ, আর্থিক এবং পরিবহন) সমর্থনকারী কম্পিউটার এবং নেটওয়ার্কগুলির বিরুদ্ধে ব্যাপকভাবে ধ্বংসাত্মক শক্তি প্রয়োগ করা। পারমাণবিক যুদ্ধ হল এমন যুদ্ধ যেখানে পারমাণবিক অস্ত্র হল প্রাথমিক বা প্রধান আত্মসমর্পণ অর্জনের পদ্ধতি। সর্বাত্মক যুদ্ধ হচ্ছে যুদ্ধ আইন আমান্য করে যুদ্ধ বৈধ সামরিক লক্ষ্যবস্তুর উপর কোন সীমাবদ্ধতা না রাখা, অস্ত্র ও কৌশল ব্যবহার করে যার ফলে উল্লেখযোগ্য বেসামরিক হতাহতের ঘটনা ঘটে বা বন্ধুত্বপূর্ণ বেসামরিক জনগণের দ্বারা উল্লেখযোগ্য ত্যাগের প্রয়োজনে যুদ্ধ প্রচেষ্টার দাবি করা। অপ্রচলিত যুদ্ধ, প্রচলিত যুদ্ধের বিপরীত একটি বিদ্যমান সংঘাতের এক পক্ষের জন্য সম্মতি, আত্মসমর্পণ বা গোপন সমর্থনের মাধ্যমে সামরিক বিজয় অর্জনের একটি প্রচেষ্টা। লক্ষ্য অনেক সত্তা যুদ্ধে যাওয়ার কথা ভাবছে এবং যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটবে কিনা তা বিবেচনা করে সত্তাগুলি একটি প্রচারের হাতিয়ার হিসাবে যুদ্ধের লক্ষ্য প্রণয়ন করতে পারে। যুদ্ধের লক্ষ্য জাতীয় সামরিক বাহিনীর সমস্যা সমাধানের বিকল্প। সংজ্ঞা: ফ্রাইড যুদ্ধের লক্ষ্যকে "একটি যুদ্ধের সফল সমাপ্তির শেষে  প্রত্যাশিত আঞ্চলিক, অর্থনৈতিক, সামরিক বা অন্যান্য সুবিধা পাওয়া" শ্রেণিবিভাগ স্পষ্ট ও অস্পষ্ট লক্ষ্য স্পষ্ট  যুদ্ধের লক্ষ্যগুলি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে (উদাহরণস্বরূপ) অঞ্চল অধিগ্রহণ (যেমন: ২০ শতকের প্রথমে লেবেনসরামের জার্মান লক্ষ্য ) বা অর্থনৈতিক ছাড়ের স্বীকৃতিসরূপ (যেমন: অ্যাংলো-ডাচ যুদ্ধগুলি)। অস্পষ্ট  যুদ্ধের লক্ষ্য – বিশ্বাসযোগ্যতা বা খ্যাতি সংগ্রহের মতো  - আরও স্পষ্ট অভিব্যক্তি থাকতে পারে ("বিজয় প্রতিপত্তি পুনরুদ্ধার করে, সংযুক্তি শক্তি বৃদ্ধি করে")। প্রভাব যুদ্ধের ক্ষতিকর প্রভাব সুদূরপ্রসারী। যুদ্ধ মানেই মানবতার পরাজয়। যুদ্ধে নিরাপরাধ মানুষের মৃত্যু ঘটে। বিশেষ করে, নারী নির্যাতন ও শিশু মৃত্যুর ঘটনা বিশ্ব বিবেককে স্তম্ভিত করে দেয়। যুদ্ধে প্রাণহানির সাথে সাথে যে বিপুল সম্পদহানি বা, অর্থনৈতিক ক্ষতি সাধিত হয় তা পূরণ করতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হয়। এ কারণে প্রায় প্রতি সময়েই যুদ্ধের পরে অবধারিতভাবে দুর্ভিক্ষ আসে, অনেক সময় দেখা দেয় মহামারী। এছাড়া, যুদ্ধের ফলে যুদ্ধের সাথে সংশ্লিষ্ট মানুষের মাঝে যে বিভেদ-বিদ্বেষ আর, সন্দেহ-অবিশ্বাসের জন্ম হয় তা দূর হতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। অনেক সময় যুগ যুগ ধরে এমনকি শতাব্দী ব্যাপী এই হিংসা ও বিদ্বেষ মানুষের সুস্থ-স্বাভাবিক চিন্তা-চেতনাকে আচ্ছন্ন করে রাখে। অনুপ্রেরণামূলক তত্ত্বসমূহ নৈতিকতা সমস্ত যুদ্ধই অমানবিক, অগ্রহণযোগ্য ও অনৈতিক। যুদ্ধ মানেই ধ্বংস। যুদ্ধ মানেই মৃত্যু এবং অধিকাংশ মৃত্যুই নিরাপরাধ মানুষের। শান্তিকামী মানুষ যুদ্ধ চায় না। তাই, যুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সবার চেষ্টা এটাই হওয়া উচিত, যেন যুদ্ধটা না ঘটে। এখন প্রশ্ন, যুদ্ধ কেন ঘটে? যুদ্ধ তখনই ঘটে যখন নেগোসিয়েশন বা, আলাপ-আলোচনা ব্যর্থ হয়। নেগোসিয়েশন কেন ব্যর্থ হয়? নেগোসিয়েশন তখনই ব্যর্থ হয় যখন কোন ইস্যুতে বা, কোন বিষয়ে একমত হওয়া যায় না। কোন বিষয়ে কখন একমত হওয়া যায় না? যখন সেই বিষয় বা, বিষয়গুলোর সাথে কিছু পক্ষ বা, মানুষ যুক্ত থাকে। বিষয় বা, বিষয়গুলোর সাথে কেন মানুষ যুক্ত হয়? যখন সেইসব বিষয় বা, বিষয়গুলোর সাথে মানুষের স্বার্থ জড়িত থাকে। কাজেই, যুদ্ধের রুট কজ্ বা, গোড়ার কারণ হলো স্বার্থপরতা। মানুষ স্বার্থের উর্দ্ধে উঠতে পারলেই সমস্ত যুদ্ধ বন্ধ হওয়া সম্ভব। এখন তাহলে দেখা উচিত কোন কোন স্বার্থের কারণে মানুষ একত্রিত হয় এবং যুদ্ধের পরিণতি ডেকে আনে। অর্থাৎ, মানুষের ক্ষতিকর সামষ্টিক স্বার্থর বিষয়গুলো কি কি? অনেকগুলোই হতে পারে। এর মধ্যে প্রথমেই আসবে পাওয়ার বা, ক্ষমতা লিপ্সা। অর্থাৎ, নিজেদেরকে অন্যদের থেকে বেশি ক্ষমতাশালী করতে চাওয়ার বাসনা। আরেকটা বিষয় হতে পারে, শ্রেষ্ঠত্বের ধারণা। অর্থাৎ, নিজেদেরকে অন্যদের থেকে শ্রেষ্ঠজ্ঞান করা। কাজেই, যুদ্ধ বন্ধ করতে চাইলে এবং মানুষের নৈতিকতার বিকাশ লাভের স্বার্থে মানুষের ক্ষমতা লিপ্সা ও নিজেদের শ্রেষ্ঠত্বের ধারণার বিষয়কে ত্যাগ করতে হবে | তথ্যসূত্র যুদ্ধ সহিংসতা মূল বিষয়ের নিবন্ধ বিরোধ নিষ্পত্তি সশস্ত্র সংঘাত
https://en.wikipedia.org/wiki/War
War
War is an armed conflict between the armed forces of states, or between governmental forces and armed groups that are organized under a certain command structure and have the capacity to sustain military operations, or between such organized groups. It is generally characterized by extreme violence, destruction, and mortality, using regular or irregular military forces. Warfare refers to the common activities and characteristics of types of war, or of wars in general. Total war is warfare that is not restricted to purely legitimate military targets, and can result in massive civilian or other non-combatant suffering and casualties. While some war studies scholars consider war a universal and ancestral aspect of human nature, others argue it is a result of specific socio-cultural, economic, or ecological circumstances.
1270
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9F%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A7%8B%E0%A6%97
টেলিযোগাযোগ
টেলিযোগাযোগ বলতে মূলত বোঝায় প্রযুক্তি ব্যবহার করে যোগাযোগের উদ্দেশ্যে দূরবর্তী কোনো স্থানে সংকেত তথা বার্তা পাঠানো। এই যোগাযোগ তারের মাধ্যমে অথবা তারবিহীন প্রযুক্তি ব্যবহার করেও হতে পারে। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দ থেকে দূর পাল্লার যোগাযোগ প্রচলিত হয়। পরবর্তীতে তারযুক্ত ও তারহীন বার্তা প্রেরণের হরেক মাধ্যম বিবর্তিত হয়েছে। টেলিফোন বা রেডিও যার প্রকৃষ্ট উদাহরণ। বর্তমানে বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিটার ব্যবহার করে তড়িচ্চুম্বক‌ তরঙ্গ পাঠানো হচ্ছে। এ যুগে টেলিযোগাযোগ বিশ্বব্যাপী বিস্তৃত এবং এ পদ্ধতিতে ব্যবহৃত যন্ত্র যেমন টেলিফোন, রেডিও, টেলিভিশন এবং ওয়াকিটকি সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায়। এ সকল যন্ত্রকে পরস্পরের সাথে সংযুক্ত করার জন্য বিভিন্ন ধরনের নেটওয়ার্ক রয়েছে। যেমন: পাবলিক টেলিফোন নেটওয়ার্ক, বেতার নেটওয়ার্ক, কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এবং টেলিভিশন নেটওয়ার্ক। ইন্টারনেট এর মাধ্যমে একটি কম্পিউটারের সাথে আরেকটি কম্পিউটারের সংযোগ স্থাপনও একপ্রকার টেলিযোগাযোগ। টেলিযোগাযোগে ব্যবহৃত প্রযুক্তি টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার মূল অংশগুলো হলো তিনটি: ট্রান্সমিটার বা প্রেরণযন্ত্র। এটি বার্তাকে প্রচার উপযোগী সংকেতে পরিণত করে। ট্রান্সমিশন মিডিয়াম বা প্রচার মাধ্যম: যার মধ্য দিয়ে সংকেত বা সিগনাল পাঠানো হয়। যেমন: বায়ু। রিসিভার বা গ্রাহকযন্ত্র: এটি সংকেত গ্রহণ করে এবং সংকেতকে ব্যাবহারযোগ্য বার্তায় পরিবর্তন করে। উদাহরণস্বরূপ, বেতার সম্প্রচারের কথা বলা যায়। এই ক্ষেত্রে, সম্প্রচার টাওয়ারটি হলো ট্রান্সমিটার, রেডিও হলো রিসিভার এবং প্রচার মাধ্যম হলো শূন্যস্থান। অনেক ক্ষেত্রেই টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা উভমুখী যোগাযোগ রক্ষা করে এবং একই যন্ত্র ট্রান্সমিটার ও রিসিভার হিসেবে কাজ করে। এগুলোকে বলা হয় ট্রান্সিভার। যেমন: মোবাইল ফোন একটি ট্রান্সিভার। ফোনের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগকে বলা হয় পয়েন্ট-টু-পয়েন্ট যোগাযোগ, কারণ এ ক্ষেত্রে একটি মাত্র ট্রান্সমিটার ও রিসিভারের মধ্যে সংযোগ স্থাপিত হচ্ছে। বেতার সম্প্রচারের মাধ্যমে টেলিযোগাযোগ বলা হয় ব্রডকাস্ট (সম্প্রচার) যোগাযোগ, কারণ এ ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী ট্রান্সমিটার ও অসংখ্য রিসিভারের মধ্যে সংযোগ ঘটছে। সিগনাল অ্যানালগ ও ডিজিটাল দু’ধরনের হতে পারে। অ্যানালগ সিগনালের ক্ষেত্রে তথ্যের পরিবর্তনের উপর ভিত্তি করে সংকেতের শক্তি ক্রমাগত পরিবর্তন করা হয়। ডিজিটাল সিগনালের বেলায় তথ্যকে কিছু নির্দিষ্ট মানের (যথা ০ এবং ১) সমন্বয়ে সংকেত এ পরিণত করা হয়। পরস্পরের সাথে সংযুক্ত এক গুচ্ছ ট্রান্সমিটার, রিসিভার বা ট্রান্সিভারের সমন্বয়ে গঠিত হয় নেটওয়ার্ক। ডিজিটাল নেটওয়ার্কে এক বা একাধিক রাউটার থাকে, যার কাজ হলো একটি নির্দিষ্ট বাবহারকারীর কাছে তথ্য পাঠানো। অ্যানালগ নেটওয়ার্কে এ এক বা একাধিক সুইচ থাকে যা দুই বা ততোধিক ব্যবহারকারীর মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে। দুই ধরনের নেটওয়ার্ক ক্ষেত্রেই বহু দূরে সিগনাল পাঠাতে রিপিটার প্রয়োজন হয়, যাতে দুর্বল অ্যানালগ সিগনালকে বিবর্ধিত করে শক্তিশালী এবং বিকৃত ডিজিটাল সিগনালকে পুনর্গঠন করা যায়। অনাকাঙ্ক্ষিত কোনো শব্দ (যা নয়েজ নামে পরিচিত) যাতে সিগনালকে বিকৃত করতে না পারে, সেজন্য এ ব্যবস্থা নেয়া হয়। চ্যানেল হলো এক ধরনের প্রচার মাধ্যম যার মধ্য দিয়ে একই সময়ে একাধিক তথ্য প্রবাহ পাঠানো যায়। যেমন, একটি বেতার কেন্দ্র ৯৬ মেগাহার্জ বেতার তরঙ্গে, আবার আরেকটি বেতার কেন্দ্র একই সময়ে ৯৪.৫ মেগাহার্টজ বেতার তরঙ্গে অনুষ্ঠান সম্প্রচার করতে পারে। এ ক্ষেত্রে মাধ্যমকে তরঙ্গ কম্পাঙ্ক বা ফ্রিকোয়েন্সি অনুসারে বিভক্ত করা হয়েছে এবং একেকটি বেতার কেন্দ্রের অনুষ্ঠান সম্প্রচারের জন্য এক একটি ফ্রিকোয়েন্সি নির্দিষ্ট করে দেয়া হয়েছে। আবার সম্প্রচারের জন্য একটি নির্দিষ্ট সময় দৈর্ঘ্য নির্ধারণ করেও একটি চ্যানেল নির্দিষ্ট করা যায়। মডুলেশন তথ্য পাঠানোর উদ্দেশ্যে সিগনালের আকার পরিবর্তন করার পদ্ধতিকে বলা হয় মডুলেশন (উপযোজন)। মডুলেশন হলো টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থার প্রাণ। একটি সিগনালে উপস্থিত তথ্য আরেকটি সিগনালের উপর চাপিয়ে দেয়ার জন্য সর্বদাই মডুলেশন পদ্ধতি বাবহৃত হয়। মডুলেশন ব্যবহার করা হয় সিগনালের কম্পাঙ্ক বাড়ানোর জন্য। কারণ বায়ু মাধ্যমে নিম্ন কম্পাঙ্কের সিগনাল খুব বেশি দূরে পাঠানো সম্ভব নয়। তাই সিগনাল পাঠানোর পূর্বে একে উচ্চ কম্পাঙ্কের আরেকটি সিগনালের উপর স্থাপন করা হয়। এটি করা হয় মূল সিগনালে বা ইনফরমেশন সিগনালে অবস্থিত তথ্য অনুসারে উচ্চ কম্পাঙ্কের সিগনালের কম্পাঙ্ক, বিস্তার () অথবা দশা (phase) পরিবর্তনের মাধ্যমে। সাধারণত মূল সিগনালের বিস্তারের পরিবর্তনের মধ্যে তথ্য উপস্থিত থাকে। উচ্চ কম্পাঙ্কের সিগনালটিকে বলা হয় বাহক সিগনাল বা ক্যারিয়ার সিগনাল। মিশ্র সিগনালটিকে বলে মডুলেটেড সিগনাল। মডুলেশন অ্যানালগ ও ডিজিটাল দুই প্রকার হতে পারে। ইনফরমেশন সিগনাল অনুসারে বাহক সিগনালের কোন বৈশিষ্ট্যটি পরিবর্তিত হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে অ্যানালগ মডুলেশন ৩ প্রকার হতে পারে। ১। বিস্তার উপযোজন পদ্ধতি(amplitude modulation): এ পদ্ধতিতে মূল সিগনালের বিস্তারের পরিবর্তনের সাথে সাথে যদি বাহক সিগনালের বিস্তার পরিবর্তিত হয়। ২। কম্পাঙ্ক উপযোজন পদ্ধতি(frequency modulation): এ পদ্ধতিতে মূল সিগনালের বিস্তার পরিবর্তনের সাথে সাথে বাহক সিগনালের কম্পাঙ্ক পরিবর্তিত হয়ে যায়। ৩। দশা উপযোজন পদ্ধতি(phase modulation): এ পদ্ধতিতে মূল সিগনালের বিস্তারের সাথে সাথে বাহক সিগনালের দশা পরিবর্তিত হয়। এটিও এক প্রকার কম্পাঙ্ক উপযোজন পদ্ধতি। উপরোল্লিখিত তিনটি মডুলেশন প্রক্রিয়াই এনালগ সিগনালের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। যদি একটি মূল অ্যানালগ সিগনাল থেকে নির্দিষ্ট সময় পর পর নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং সেই নমুনায় সিগনালের বিস্তারের মান (value)-কে ডিজিটাল সংখ্যায় রূপান্তর করা হয়, তবে তাকে ডিজিটাল সিগনাল বলা হয়। ডিজিটাল তথ্যকে অ্যানালগ তরঙ্গাকারে উপস্থাপন করতে মডুলেশন করা হয়। একে বলা হয় “কীয়িং”। বিভিন্ন ধরনের কীয়িং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়, যেমন- ফেজ শিফ্‌ট কীয়িং, অ্যাম্পলিচ্যুড শিফ্‌ট কীয়িং, মিনিমাম শিফ্‌ট কীয়িং। ব্লুটুথ প্রযুক্তিতে দু’টি যন্ত্রের মধ্যে সংযোগ স্থাপনে ফেজ শিফ্‌ট কীয়িং প্রযুক্তি ব্যবহৃত হয়। মডুলেশনের উদাহরণ: মানুষের কণ্ঠস্বরের উপর উপযোজিত কম্পাঙ্ক সাধারণত ৩০০–৩৪০০ হার্জের মাঝে। এই কম্পাঙ্কের শব্দ খুব বেশি দূরে থেকে শুনতে পাওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু যদি মানুষের এই কম্পাঙ্কের কথা একটি ৯৬ মেগাহার্টজ কম্পাঙ্কের বাহক সিগনালের তবে তা দূরে প্রেরণ করা সম্ভব হয়। এভাবেই বেতার সম্প্রচারিত হয়ে থাকে। ইতিহাস প্রাচীন যুগের যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রাচীন যুগে মানুষ দুরে অবস্থানকারী কোনো মানুষের সাথে ধোঁয়ার সংকেত দিয়ে বা ঢোল বাজিয়ে যোগাযোগ করত। আফ্রিকা, নিউ গিনি এবং দক্ষিণ আমেরিকার স্থানীয় উপজাতিরা ঢোল বাজিয়ে পরস্পরের সাথে যোগাযোগ করত। চিন ও উত্তর আমেরিকার অধিবাসীরা ধোঁয়ার সংকেত দিয়ে দূরে খবর পাঠাত। খ্রিষ্টপূর্ব দ্বিতীয় সহস্রাব্দে মেসোপটেমিয়ায় এমনই এক টেলিযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে উঠেছিল। ইউফ্রেটিস নদীর তীরে মালির আক্কাদিয়ান নগরীতে আলোক সংকেতের মাধ্যমে সংবাদ প্রেরণ করত। ১৭৫৪ খ্রিষ্টাব্দে ফরাসি পদার্থবিদ জাঁ-আন্তোয়িন নুলে () বৈদ্যুতিক ট্রান্সমিশন উদ্ভাবন করেন। ১৭৯২ সালে ক্লদ শাপে (Claude Chappe) নামে একজন ফরাসি প্রকৌশলী প্রথম দৃশ্যমান টেলিগ্রাফ যন্ত্র তৈরি করেন যা লিল ও প্যারিস এর মাঝে সংযোগ স্থাপন করে। এ ক্ষেত্রে সেমাফোর পদ্ধতি ব্যবহৃত হত। সেমাফোর পদ্ধতিতে দুটি পতাকার বিভিন্ন অবস্থানের মাধ্যমে বিভিন্ন বর্ণ নির্দেশ করে সংকেত পাঠানো হয়। লিল থেকে প্যারিস পর্যন্ত স্থাপিত প্রথম সংযোগটি পরে স্ট্রাসবার্গ পর্যন্ত বর্ধিত হয়। ১৭৯৪ সালে সুইডিশ প্রকৌশলী আব্রাহাম এডেলক্রান্টজ সামান্য ভিন্ন একটি প্রযুক্তি ব্যবহার করে স্টকহোম থেকে ড্রটিংহোম পর্যন্ত সংযোগ স্থাপন করেন। শাপে-র যন্ত্রে কপিকলের মাধ্যমে কাঠের তক্তা ঘওরার ব্যবস্থা ছিল। অপরদিকে ক্রান্টজের যন্ত্রে কেবল হালকা শাটার ব্যবহৃত হওয়ায় এর গতি ছিল বেশি। কিন্তু সেমাফোর পদ্ধতি ব্যবহার করে যোগাযোগ করা অভিজ্ঞ ব্যক্তি ছাড়া অসম্ভব ছিল। এছাড়াও অল্প দূরত্ব (১০-৩০ কি.মি.) পরপর টাওয়ার নির্মাণের বিশাল খরচের কারণে ১৮৮০ সালের পর থেকে বাণিজ্যিকভাবে এ যোগাযোগ ব্যবস্থা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়। টেলিগ্রাফ ও টেলিফোন স্যার চার্লস হুইটস্টোন এবং স্যার উইলিয়াম ফদারগিল কুক সর্বপ্রথম বাণিজ্যিকভাবে বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ যন্ত্র তৈরি করেন। এতে একটি নির্দেশক কাঁটার বিক্ষেপের মাধমে বার্তা পাঠানো হতো। ১৮৩৯ সালের ৯ই এপ্রিল তারিখে গ্রেট ওয়েস্টার্ন রেলওয়ের ২১ কি.মি. দূরত্বে যোগাযোগ স্থাপন করতে এর ব্যবহার শুরু হয়। একই সময়ে আটলান্টিকের অপর পারে স্যামুয়েল মোর্স আলাদাভাবে একটি বৈদ্যুতিক টেলিগ্রাফ যন্ত্র তৈরি করেন এবং ১৮৩৭ সালের ২রা সেপ্টেম্বর জনসমক্ষে উপস্থাপন করেন। কিন্তু যন্ত্রটি সফলভাবে কাজ করতে ব্যর্থ হয়। এরপর তিনি আলফ্রেড় ভেইল নামে একজন বিজ্ঞানীর সঙ্গে সম্মিলিতভাবে আরেকটি যন্ত্র আবিষ্কার করেন যেটি টেলিগ্রাফ বার্তাকে কাগজের ফিতায় সংরক্ষণ করতে পারে। ১৮৩৮ সালের ৬ই জানুয়ারি তাদের এই যন্ত্রটি প্রথমে ৫ কিলোমিটার ও পরে ২৪মে,১৮৪৪ তারিখে ওয়াশিংটন ও বাল্টিমোরের মাঝে ৬৪ কি.মি. দূরত্বে সফলভাবে কাজ করে। তারা তাদের এই যন্ত্রটি পেটেন্ট করেন। ১৮৫১ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রে ২০,০০০ মাইল দীর্ঘ টেলিগ্রাফ লাইন স্থাপিত হয়। ১৮৬৬ সালে প্রথম সফলভাবে আটলান্টিকের দু'প্রান্তের মাঝে টেলিগ্রাফ সংযোগ স্থাপিত হয়। এর পুর্বে ১৮৫৭ ও ১৮৫৭ সালেও এ সংযোগ স্থাপন করা হয়েছিল, কিন্তু কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ পরেই তা অচল হয়ে পড়ে। ১৮৫৭ সালে আলেক্সান্ডার গ্রাহাম বেল টেলিফোন আবিষ্কার করেন। অবশ্য এর আগে ১৮৪৯ সামে অ্যান্টোনিও মেউচ্চি একটি যন্ত্র আবিষাক্র করেন যার মাধ্যমে লাইনের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিকভাবে কন্ঠ প্রেরণ করা যেত। এই যন্ত্রটি শব্দবৈদ্যুতিক প্রভাবের উপর নির্ভর করত। কিন্তু এই যন্ত্রটি ব্যবহার করা অসম্ভব ছিল কারণ ব্যবহারকারীকে গ্রাহক যন্ত্রটি মুখে ঢুকিয়ে কথা শুনতে হত। ১৮৭৮ ও ১৮৭৯ সালে আটলান্টিকের উভয় পারে নিউ হ্যাভেন ও লন্ডোন শহরে বাণিজ্যিক টেলিফোন ব্যবস্থা চালু হয়। এই ব্যবস্থা চালু করার জন্য আলেক্সান্ডার বেল উভয় দেশেই পেটেন্ট লাভ করেন। এরপর অতি দ্রুত প্রযুক্তির প্রসারণ হয়। ১৮৮০ সালের মধ্যে যুক্তরাষ্ট্রের প্রধান শহরগুলোতে এক্সচেঞ্জ এবং আন্তঃশহর টেলিফোন লাইন স্থাপিত হয়। সংযোগ স্থাপন করার জন্য সুইচিং প্রযুক্তিও উন্নত হয়। তা সত্বেও আটলান্টিকের দু'পারের মাঝে কন্ঠ আদান প্রদান করা সম্ভব ছিল না। ১৯২৭ সালের ৭ই জানুয়ারি প্রথম বেতার সংযোগের মাধ্যমে কন্ঠ যোগাযোগ স্থাপিত হয়। ১৯৫৬ সালের ২৫শে সেপ্টেম্বর ট্রান্স-আটলান্টিক-টেলিফোন লাইন স্থাপিত হওয়ার আগ পর্যন্ত দুই ভুখন্ডের মাঝে কোন তার সংযোগ ছিল না। এই টেলিফোন লাইন্টিতে ৩৬টি টেলিফোন সার্কিট ছিল। বেতার ও টেলিভিশন ১৮৩২ সালে জেমস লিন্ডসে শ্রেনীকক্ষে তার ছাত্রদের সামনে তারবিহীন টেলিগ্রাফ সংযোগ উপস্থাপন করেন। ১৮৫৪ সালে তিনি পানিকে মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করে ডান্ডি থেকে উঢ্যাভেন পরযন্ত দুই মাইল দূরত্বে তার বিহীন সংযোগ স্থপন করে দেখান। ১৮৯৩ সালে ফ্রাঙ্কলিন ইন্সটিটিউটে এক বক্তৃতায় নিকোলা টেসলা উদাহরণসহ তারবিহীন টেলিগ্রাফি প্রযুক্তির বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা দেন। ভ্যাকুয়াম টিউব আবিষ্কারের পুর্বে বেতার ব্যবস্থায় যে সকল যন্ত্রপাতি ব্যবহৃত হত সে সব উপকরণ ব্যবহার করেই তিনি এ উদাহরণ উপস্থাপন করেন। ১৯০০ সালে রেগিনাল্ড ফেসেন্ডেন প্রথম তার ছাড়া মানুষের কন্ঠস্বর প্রেরণ করতে সক্ষম হন। ১৯০১ সালে গুগলিয়েলমো মার্কোনি যুক্তরাজ্য ও যুক্তরাষ্ট্রের মাঝে তার বিহীন সংযোগ স্থাপন করেন, যা তাকে ১৯০৯ সালে নোবেল পুরস্কার এনে দেয় (তিনি কার্ল ব্রাউন এর এর সাথে যুগ্মভাবে এ পুরস্কার পান)। ১৯২৫ সালের ২৫শে মার্চ, লন্ডনের সেলফ্রিজ নামের একটি মনিহারী দোকানে জন লগি বেয়ার্ড চলন্ত ছবি প্রেরণ করে দেখান। অবশ্য তার যন্ত্রটি সম্পূর্ণ ছবি দেখাবার বদলে ধারণকৃত ছবির একটি অস্পষ্ট ছায়া প্রদর্শন করেছিল কিন্তু অবিলম্বে অক্টোবর মাসেই তিনি এ সমস্যার সমাধান করেন এবং ১৯২৬ সালের ২৬শে জানুয়ারী পুনরায় ঐ সেলফ্রিজ দোকানেই আবার টেলিভিশন উপস্থাপন করেন। বেয়ার্ডের তৈরি টেলিভিশন নিপকও চাকতি(nipkow disk) ব্যবহার করে ছবি গ্রহণ ও প্রদর্শন করা হতো, তাই একে বলা হয় যান্ত্রিক টেলিভিশন। এই যন্ত্রের উপর নির্ভর করেই ১৯২৯ সালের ৩০শে সেপ্টেম্বর ব্রিটিশ ব্রডকাস্টিং করপোরেশন বা বিবিসি এর পরীক্ষামুলক সম্প্রচার চালু হয়। বিংশ শতকের অধিকাংশ টেলিভিশনে ব্যবহৃত হয় কার্ল ব্রাউন এর আবিষ্কৃত ক্যাথোড রে টিউব প্রযুক্তি। এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে ফিলো ফার্ন্সওয়র্থ প্রথম একটি কার্যকরী মডেল তৈরি করে তার পরিবারের সদস্যদের দেখান ১৯২৭ সালের ৭ই সেপ্টেম্বর। একই সময়ে ভলাদিমির যোরিকিনও এই রযুতিতে ব্যবহার করে বৈদ্যুতিক টেইভিশন আবিষ্কার করেন। পরে আদালতে ফয়সালা করে ফার্ন্সওয়র্থকে এই আবিষ্কারের কৃতিত্ব দেয়া হয়। কম্পিউটার নেটওয়ার্ক এবং ইন্টারনেট তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ ATIS Telecom Glossary Communications Engineering Tutorials Federal Communications Commission IEEE Communications Society International Telecommunication Union (Ericsson removed the book from their site in September 2005) VoIP, Voice over Internet Protocol and Internet telephone calls Free Telco Dictionary টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি মূল বিষয়ের নিবন্ধ পরিবহন ও জন-উপযোগ শিল্পের অর্থশাস্ত্র গণমাধ্যম প্রযুক্তি টেলিযোগাযোগ
https://en.wikipedia.org/wiki/Telecommunications
Telecommunications
Telecommunication, often used in its plural form or abbreviated as telecom, is the transmission of information with an immediacy comparable to face-to-face communication. As such, slow communications technologies like postal mail and pneumatic tubes are excluded from the definition. Many transmission media have been used for telecommunications throughout history, from smoke signals, beacons, semaphore telegraphs, signal flags, and optical heliographs to wires and empty space made to carry electromagnetic signals. These paths of transmission may be divided into communication channels for multiplexing, allowing for a single medium to transmit several concurrent communication sessions. Several methods of long-distance communication before the modern era used sounds like coded drumbeats, the blowing of horns, and whistles. Long-distance technologies invented during the 20th and 21st centuries generally use electric power, and include the telegraph, telephone, television, and radio. Early telecommunication networks used metal wires as the medium for transmitting signals. These networks were used for telegraphy and telephony for many decades. In the first decade of the 20th century, a revolution in wireless communication began with breakthroughs including those made in radio communications by Guglielmo Marconi, who won the 1909 Nobel Prize in Physics. Other early pioneers in electrical and electronic telecommunications include co-inventors of the telegraph Charles Wheatstone and Samuel Morse, numerous inventors and developers of the telephone including Antonio Meucci and Alexander Graham Bell, inventors of radio Edwin Armstrong and Lee de Forest, as well as inventors of television like Vladimir K. Zworykin, John Logie Baird and Philo Farnsworth. Since the 1960s, the proliferation of digital technologies has meant that voice communications have gradually been supplemented by data. The physical limitations of metallic media prompted the development of optical fibre. The Internet, a technology independent of any given medium, has provided global access to services for individual users and further reduced location and time limitations on communications.
1271
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%A6
শব্দ
পদার্থবিজ্ঞানে শব্দ হলো একধরনের কম্পন যা গ্যাস, তরল বা কঠিন মাধ্যমের সাহায্যে শব্দ তরঙ্গ হিসাবে সঞ্চালিত হয়। মানব শারীরতত্ত্ব এবং মনোবিজ্ঞানে শব্দ হলো একধরনের তরঙ্গের শ্রবণ এবং মস্তিষ্ক কর্তৃক এগুলো উপলব্ধি করা। যেসকল শব্দের কম্পাঙ্ক ২০ Hz থেকে ২০ kHz কম্পাঙ্ক সীমার মধ্যে অবস্থিত, কেবল সেই শব্দই মানুষের মধ্যে শ্রবণ অনুভূতি প্রকাশ করে। সাধারণ বায়ুমণ্ডলীয় চাপে ও বায়ু মাধ্যমে এই শব্দের তরঙ্গদৈর্ঘ্য থেকে । ২০ k Hz উপরের শব্দ তরঙ্গগুলি আল্ট্রাসাউন্ড বা শ্রবণাতীত শব্দ হিসাবে পরিচিত এবং এগুলো মানুষের কাছে শ্রবণীয় নয়। ২০ Hz নিচে শব্দ তরঙ্গগুলি ইনফ্রাসাউন্ড বা অবশ্রাব্য শব্দ হিসাবে পরিচিত। বিভিন্ন প্রজাতির প্রাণির শ্রবণসীমা বিভিন্ন হয়ে থাকে। শব্দবিজ্ঞান শব্দবিজ্ঞান হলো আন্তঃশৃঙ্খলা বিজ্ঞান যা কম্পন, শব্দ, শ্রবণাতীত শব্দ এবং অবশ্রাব্য শব্দসহ গ্যাস, তরল এবং কঠিনের মধ্যে যান্ত্রিক তরঙ্গ অধ্যয়নের বিষয়ে আলোচনা করে। যে বিজ্ঞানী শব্দবিজ্ঞান নিয়ে কাজ করেন তিনি হলেন একজনশব্দবিজ্ঞানী, অন্যদিকে শাব্দিক প্রকৌশল নিয়ে যিনি কাজ করেন তাকে শব্দ প্রকৌশলী বলা যেতে পারে। অন্যদিকে, একজন অডিও ইঞ্জিনিয়ার শব্দের রেকর্ডিং, ম্যানিপুলেশন, মিশ্রণ এবং অনুকরণ নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকেন। শব্দবিজ্ঞানের প্রয়োগ আধুনিক সমাজের প্রায় সব ক্ষেত্রেই পাওয়া যায়, যার উপশৃঙ্খলার মধ্যে রয়েছে বায়ুসংস্থান, অডিও সংকেত প্রক্রিয়াজাতকরণ, স্থাপত্য শব্দবিজ্ঞান, জৈবশব্দবিজ্ঞান, বৈদ্যুতিক-শব্দবিজ্ঞান, পরিবেশের কোলাহল, বাদ্যযন্ত্রের শব্দবিজ্ঞান, কোলাহল নিয়ন্ত্রণ, মনোশব্দবিজ্ঞান, বক্তৃতা, আল্ট্রাসাউন্ড, জলের তলদেশীয় শব্দবিজ্ঞান এবং কম্পন। সংজ্ঞা শব্দকে সংজ্ঞায়িত করা হয়, "(ক) অভ্যন্তরীণ বলসম্পন্ন মাধ্যমে চাপ, পীড়ন, কণার সরণ, কণার বেগ ইত্যাদির স্পন্দনের সঞ্চালন বা এধরনের সঞ্চালিত দোলনের সুপারপজিশন দ্বারা। (খ) ক তে বর্ণীত স্পন্র্ত শ্রাবণ সংবেদন দ্বারা।" শব্দকে বায়ু বা অন্যান্য স্থিতিস্থাপক মাধ্যমে একটি তরঙ্গ গতি হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারে। এক্ষেত্রে শব্দ একটি উদ্দীপনা। শব্দ শ্রবণ প্রক্রিয়ার উত্তেজনা হিসাবেও দেখা যায় যা শব্দের উপলব্ধির ফলস্বরূপ। এক্ষেত্রে শব্দ একধরনের সংবেদন। শব্দের পদার্থবিজ্ঞান শব্দ বায়ু, তরল এবং কঠিনের মধ্য দিয়ে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ হিসাবে এবং কঠিন পদার্থের মধ্য দিয়ে আড় তরঙ্গ হিসাবেও প্রচারিত হতে পারে (নীচে অনুদৈর্ঘ্য এবং আড় তরঙ্গ দেখুন)। শব্দ তরঙ্গগুলি একটি স্টেরিও স্পিকারের স্পন্দিত ডায়াফ্রামের মতো শব্দ উৎস দ্বারা উৎপন্ন হয়। শব্দ উৎস আশেপাশের মাধ্যমে কম্পন সৃষ্টি করে। উৎসটি মাধ্যমে কম্পন সৃষ্টি করতে থাকে এবং কম্পনগুলি উৎস থেকে শব্দের গতিতে চারপাশে বিস্তারিত হয়ে থাকে, ফলে শব্দ তরঙ্গ তৈরি হয়। উৎস থেকে একটি নির্দিষ্ট দূরত্বে চাপ, বেগ এবং মাধ্যমের সরণ সময়ের সাথে পরিবর্তিত হয়। এক মুহুর্তে, চাপ, বেগ এবং স্থানচ্যুতি স্থানটিতে পৃথক হয় in নোট করুন যে মাঝারি কণাগুলি শব্দ তরঙ্গ নিয়ে ভ্রমণ করে না। কোনো মুহুর্তে চাপ, বেগ এবং সরণ স্থানের সাথে ভিন্ন হতে পারে। লক্ষণীয় যে, মাধ্যমের কণাগুলি শব্দ তরঙ্গের সাথে স্থায়ীভাবে সরে যায় না। এটি কঠিন, তরল এবং গ্যাস সকল মাধ্যমের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য (গ্যাস বা তরল পদার্থের কণাগুলি স্পন্দন পরিবহন করে, কিন্তু সময়ের সাথে সাথে কণার গড় অবস্থান পরিবর্তন হয় না)। প্রচারের সময় মাধ্যমের মধ্যে তরঙ্গগুলি প্রতিফলিত, প্রতিসরিত এবং শিথিলতাপ্রাপ্ত হতে পারে। শব্দ সঞ্চারণ সাধারণত তিনটি বিষয় দ্বারা প্রভাবিত হয়: মাধ্যমের ঘনত্ব এবং চাপের মধ্যে একটি জটিল সম্পর্কের দ্বারা। তাপমাত্রা দ্বারা প্রভাবিত এই সম্পর্কটি মাধ্যমের মধ্যে শব্দের গতি নির্ধারণ করে। মাধ্যমের নিজের গতি। যদি মাধ্যমটি চলমান থাকে তবে এই চলনের দিকের উপর নির্ভর করে শব্দ তরঙ্গের পরম গতি বাড়াতে বা কমতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, যদি শব্দ এবং বায়ু একই দিকে অগ্রসর হয় তবে বাতাসের বেগ এর মধ্য দিয়ে চলমান শব্দের বেগকে বাড়িয়ে তুলবে। আবার, শব্দ এবং বায়ু যদি বিপরীত দিকে চলতে থাকে তবে বাতাসের গতিবেগের কারণে শব্দ তরঙ্গের বেগ হ্রাস পাবে। মাধ্যমের সান্দ্রতা। মাধ্যমের সান্দ্রতা শব্দের তীক্ষ্ণতা হ্রাসের হার নির্ধারণ করে। বায়ু বা জল হিসাবে অনেক মাধ্যমের সান্দ্রতা কারণে তীক্ষ্ণতার হ্রাস নগণ্য। যখন শব্দ এমন কোনো মাধ্যমের মধ্য দিয়ে চলাচল করে যার ভৌত বৈশিষ্ট্য ধ্রুবক নয়, তখন এটি প্রতিসরিত হতে পারে (হয় অভিসারী বা অপসারিত)। যান্ত্রিক কম্পন যা শব্দ হিসাবে ব্যাখ্যা করা যায় তা সকল ধরনের পদার্থের মধ্য দিয়ে ভ্রমণ করতে পারে, যেমন গ্যাস, তরল, কঠিন এবং প্লাজমা। যা শব্দকে ধারণ করে তাকে বলা হয় মাধ্যম। শব্দ শূন্যস্থানের মধ্য দিয়ে চলাচল করতে পারে না। অনুদৈর্ঘ্য এবং আড় তরঙ্গ শব্দ গ্যাস, প্লাজমা এবং তরলের মধ্য দিয়ে অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ হিসাবে সঞ্চারিত হয়, যাকে সংক্ষেপণ বা সংকোচন তরঙ্গও বলা হয়। এটির সঞ্চালনের জন্য একটি মাধ্যম প্রয়োজন। কঠিন মাধ্যমে এটি অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গ এবং অনুপ্রস্থ তরঙ্গ উভয় ভাবেই সঞ্চালিত হতে পারে। অনুদৈর্ঘ্য শব্দ তরঙ্গগুলি অসম চাপ থেকে পরিবর্তিত চাপ বিচ্যুতির তরঙ্গ, যা স্থানীয় সংকোচন এবং প্রসারণ অঞ্চল সৃষ্টির কারণ। যেখানে অনুপ্রস্থ তরঙ্গ (কঠিন পদার্থে) হলো সঞ্চালন দিকের ডান কোণের দিকে পরিবর্তী কৃন্তন পীড়ন। শব্দ তরঙ্গগুলি পরাবৃত্তীয় আয়না এবং শব্দ তৈরি করে এমন বস্তুসমূহ ব্যবহার করে "দেখা" যেতে পারে। একটি শব্দ তরঙ্গ দ্বারা বাহিত শক্তি পদার্থের অতিরিক্ত সংকোচন (অনুদৈর্ঘ্য তরঙ্গের ক্ষেত্রে) বা সরন বিকৃতির (আড় তরঙ্গের ক্ষেত্রে) বিভব শক্তি এবং মাধ্যমের কণার সরণ বেগের গতিশক্তিকে সামনে পিছনে রুপান্তর করতে থাকে॥ শব্দ তরঙ্গের বৈশিষ্ট্য যদিও শব্দের সঞ্চালন সম্পর্কিত অনেকগুলি জটিলতা রয়েছে, শ্রবণের ক্ষেত্রে (যেমন কান), শব্দ সহজেই দুটি উপাদান চাপ এবং সময়ে বিভাজ্য হয়। এই মৌলিক উপাদান দুটি সমস্ত শব্দ তরঙ্গের ভিত্তি তৈরি করে। এই উপাদান দুটি শ্রাব্য সকল শব্দকে বর্ণনা করতে ব্যবহার করতে পারি। শব্দকে আরও পুরোপুরি বুঝতে হলে একটি জটিল তরঙ্গকে,‌ যেমন এই পাঠ্যের ডানদিকে নীল পটভূমিতে দেখানো তরঙ্গকে সাধারণত এর উপাদানগুলির মধ্যে বিভক্ত করা হয়, যা বিভিন্ন শব্দ তরঙ্গ কম্পাঙ্কের (এবং কোলাহলের) সংমিশ্রন। শব্দ তরঙ্গকে প্রায়শই সরলীকৃতভাবে সাইনোসয়েডাল সমতল তরঙ্গ হিসেবে বর্ণনা হয়, যাকে এই সাধারণ বৈশিষ্ট্যগুলি দ্বারা চিহ্নিত করা হয়: কম্পাঙ্ক, বা এর বিপরীত তরঙ্গদৈর্ঘ্য বিস্তার, শব্দের চাপ বা তীব্রতা শব্দের বেগ দিক যে শব্দগুলি মানুষ কর্তৃক উপলব্ধিযোগ্য তা প্রায় ২০ হার্জ থেকে ২০,০০০ হার্জ কম্পাঙ্কের মধ্যে সীমাবদ্ধ। আদর্শ তাপমাত্রা ও চাপে বায়ুতে, এই শব্দ তরঙ্গগুলির তরঙ্গদৈর্ঘ্য থেকে পর্যন্ত হয়। কখনও কখনও গতি এবং দিক একটি বেগ ভেক্টর হিসাবে মিলিত হয়; তরঙ্গ সংখ্যা এবং দিক তরঙ্গ ভেক্টর হিসাবে সংযুক্ত হয়। অনুপ্রস্থ তরঙ্গ, যা কৃন্তন তরঙ্গ নামেও পরিচিত, এর অতিরিক্ত সমবর্তন বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা শব্দ তরঙ্গগুলির বৈশিষ্ট্য নয়। শব্দের বেগ শব্দের বেগ তরঙ্গগুলি যে মাধ্যমের মধ্য দিয়ে যায় তার উপর নির্ভর করে এবং এটি উপাদানের একটি মৌলিক বৈশিষ্ট্য। শব্দের গতি পরিমাপের দিকে প্রথম উল্লেখযোগ্য প্রচেষ্টা করেছিলেন আইজাক নিউটন। তিনি বিশ্বাস করেছিলেন যে কোনও নির্দিষ্ট পদার্থে শব্দের বেগ তার চাপ এবং ঘনত্বের ভাগফলের বর্গমূলের সমান: এটি পরবর্তীকালে ভুল প্রমাণিত হয়েছিল এবং ফরাসী গণিতবিদ ল্যাপ্লাস এই সূত্রটি সংশোধন করেছিলেন। নিউটনের বিশ্বাস অনুসারে শব্দ সঞ্চালনের ঘটনাটি সমোষ্ণ, কিন্তু আসলে তা রুদ্ধতাপীয়। তিনি সমীকরণটিতে গামা যুক্ত করে কে দ্বারা গুন করেছিলেন এবং . সমীকরণ উপস্থাপন করেছিলেন। যেহেতু , তাই চূড়ান্ত সমীকরণ দাঁড়ায় , যা নিউটন–ল্যাপ্লাস সমীকরণ নামেও পরিচিত। এই সমীকরণে K হলো স্থিতিস্থাপক আয়তন গুণাঙ্ক, c হলো শব্দের বেগ এবং হলো ঘনত্ব। সুতরাং, শব্দের বেগ মাধ্যমের আয়তন গুণাঙ্ক এবং ঘনত্বের অনুপাতের বর্গমূলের সমানুপাতিক। এই ভৌত বৈশিষ্ট্য এবং শব্দের গতি পরিবেষ্টনকারী অবস্থার সাথে পরিবর্তিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, গ্যাসীয় মাধ্যমে শব্দের বেগ তাপমাত্রার উপর নির্ভর করে। সূত্র ব্যবহার করে সমুদ্রপৃষ্ঠে তাপমাত্রায় শব্দের বেগ আনুমানিক । পরিষ্কার পানিতে শব্দের বেগ আনুমানিক । ইস্পাতে শব্দের বেগ প্রায় । শব্দের বেগ কঠিন পারমাণবিক হাইড্রোজেনে সবচেয়ে বেশি, প্রায় । শব্দের উপলব্ধি পদার্থবিজ্ঞানে শব্দের ব্যবহার ছাড়াও শব্দের একটি স্বতন্ত্র ব্যবহার রয়েছে শারীরতত্ত্ব এবং মনোবিজ্ঞানে, যেখানে এটি মস্তিষ্ক দ্বারা শব্দকে উপলব্ধির বিষয়কে বোঝায়। মনোশব্দবিজ্ঞান ক্ষেত্রটি এই জাতীয় গবেষণায় নিবেদিত। ওয়েবস্টারের ১৯৩৬ সালের অভিধানে শব্দকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে: "১. শ্রবণ সংবেদন, যা শোনা যায়; নির্দিষ্ট করে: ক. মনোবিজ্ঞান- কোনও বস্তুগত মাধ্যম, সাধারণত বায়ুতে সঞ্চারিত কম্পন দ্বারা মস্তিষ্কের শ্রবণ স্নায়ু এবং শ্রবণ কেন্দ্রগুলির উদ্দীপনাজনিত কারণে সংবেদন যা শ্রবণের অঙ্গকে প্রভাবিত করে। খ. পদার্থবিজ্ঞান- স্পন্দনশীল শক্তি যা এই জাতীয় সংবেদন ঘটায়। শব্দ সঞ্চালনশীল অনুদৈর্ঘ্য কম্পনযুক্ত উত্তেজনা (শব্দ তরঙ্গ) দ্বারা সঞ্চালিত হয়।" এর অর্থ এই যে, "যদি কোনও গাছ বনের মধ্যে পড়ে যায় যা কেউ শুনতে পায় না, তা কি শব্দ উৎপন্ন করে?" প্রশ্নের সঠিক উত্তর "হ্যাঁ" এবং "না" উভয়ই যথাক্রমে ভৌত এবং মানসদৈহিক সংজ্ঞানুযায়ী সঠিক। যে কোনও জীবের শ্রবণ অঙ্গে শব্দের ভৌত শ্রাব্যতা কিছু নির্দিষ্ট কম্পাঙ্কের সীমা দ্বারা সীমাবদ্ধ। মানুষ সাধারণত প্রায় ২০ হার্জ এবং ২০,০০০ হার্জ (২০ কিলোহার্জ) কম্পাঙ্কের মধ্যের শব্দ শুনতে পায়। বয়সের সাথে সাথে উপরের সীমা হ্রাস পায়। কখনও কখনও শব্দ দ্বারা কেবলমাত্র মানুষের শ্রবণসীমার মধ্যে অবস্থিত কম্পাঙ্কবিশিষ্ট শব্দকে বুঝায় বা কখনও কখনও এটি কোনও নির্দিষ্ট প্রাণীর সাথে সম্পর্কিত সীমার মধ্যের শব্দকে বুঝায়। অন্যান্য প্রজাতির শ্রবণসীমার বিভিন্ন ব্যাপ্তি রয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, কুকুরগুলি ২০ কিলোহার্জ এর চেয়ে বেশি কম্পাঙ্কের স্পন্দন বুঝতে পারে। প্রধান ইন্দ্রিয়গুলির মধ্যে কোনো একটি দ্বারা শব্দকে উপলব্ধি করে অনেক প্রজাতি বিপদ সনাক্ত, দিক নির্ণয়, শিকার এবং যোগাযোগ করার জন্য ব্যবহার করে। পৃথিবীর বায়ুমণ্ডল, পানি এবং কার্যত যে কোনও ভৌত ঘটনা যেমন আগুন, বৃষ্টি, বাতাস, সার্ফ বা ভূমিকম্প প্রত্যেকে অনন্য (এবং এটির বৈশিষ্ট্যযুক্ত) ধ্বনি উৎপাদন করে। ব্যাঙ, পাখি, সামুদ্রিক এবং স্থল স্তন্যপায়ী প্রাণীর মতো অনেক প্রজাতির শব্দ তৈরির জন্য বিশেষ অঙ্গ বিকশিত হয়েছে। কিছু প্রজাতিতে এগুলি গান এবং কথা উৎপন্ন করতে পারে। তদ্ব্যতীত, মানুষ সংস্কৃতি এবং প্রযুক্তির উন্নয়ন সাধন করেছে (যেমন সঙ্গীত, টেলিফোন এবং রেডিও) যা তাদের শব্দ উৎপন্ন, রেকর্ড, প্রেরণ এবং সম্প্রচারের সুযোগ করে দেয়। কোলাহল দ্বারা প্রায়শই অযাচিত শব্দকে বোঝানো হয়। বিজ্ঞান এবং প্রকৌশলের ক্ষেত্রে কোলাহল একটি অবাঞ্ছিত উপাদান যা একটি আবশ্যক সংকেতকে অস্পষ্ট করে তোলে। যাইহোক, শব্দ উপলব্ধিতে এটি প্রায়শই একটি শব্দের উৎস সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হতে পারে এবং সুর উপলব্ধি করার একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সাউন্ডস্কেপ হলো শাব্দিক পরিবেশের একটি উপাদান যা মানুষ উপলব্ধি করতে পারে। শাব্দিক পরিবেশ হলো আশেপাশের পরিবেশের প্রেক্ষাপটে পরিবেশ দ্বারা সংশোধিত এবং মানুষের বোঝা প্রদত্ত অঞ্চলে সমস্ত শব্দের (মানুষের শ্রবণযোগ্য হতেও পারে নাও হতে পারে) সংমিশ্রণ। ঐতিহাসিকভাবে ছয়টি পরীক্ষামূলকভাবে পৃথকযোগ্য উপায় রয়েছে যাতে শব্দ তরঙ্গ বিশ্লেষণ করা হয়। সেগুলি হলো: তীক্ষ্ণতা, সময়কাল, শব্দোচ্চতা, সুর, সোনিক অঙ্গবিন্যাস এবং স্থানিক অবস্থান। এই পদগুলির কয়েকটির একটি আদর্শ সংজ্ঞা রয়েছে (উদাহরণস্বরূপ আনসি অ্যাকোস্টিকাল টার্মিনোলজি ANSI/ASA S1.1-2013)। সাম্প্রতিক পদ্ধতিগুলিতে টেম্পোরাল এনভেলোপ এবং টেম্পোরাল সূক্ষ্ম কাঠামোকে ধারণাগতভাবে প্রাসঙ্গিক বিশ্লেষণ হিসাবে বিবেচনা করা হয়েছে। তীক্ষ্ণতা তীক্ষ্ণতার সাহায্যে কোন শব্দ কতটুকু "চড়া" বা "মোটা" তা বোঝা যায় এবং শব্দটি তৈরি করা কম্পনগুলির চাক্রিক, পুনরাবৃত্ত প্রকৃতির প্রতিনিধিত্ব করে। সরল শব্দের ক্ষেত্রে তীক্ষ্ণতা শব্দটির মধ্যে সবচেয়ে ধীর কম্পনের কম্পাঙ্কের সাথে সম্পর্কিত (যাকে মৌলিক সমমেল বলা হয়)। জটিল শব্দের ক্ষেত্রে, তীক্ষ্ণতা উপলব্ধি পৃথক হতে পারে। কখনও কখনও ব্যক্তিরা বিশেষ শব্দ নিদর্শনে তাদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার ভিত্তিতে একই শব্দের জন্য আলাদা আলাদা তীক্ষ্ণতা চিহ্নিত করেন। একটি নির্দিষ্ট তীক্ষ্ণতা নির্বাচন এর সাথে সম্পৃক্ত কম্পনের কম্পাঙ্ক এবং এগুলোর মধ্যে ভারসাম্যসহ পূর্ব থেকে সচেতন পরীক্ষণের মাধ্যমে নির্ধারিত হয়। সম্ভাব্য সমমেল চিহ্নিত করার জন্য নির্দিষ্ট মনোযোগ দেওয়া হয়। প্রতিটি শব্দকে চড়া থেকে মোটা তীক্ষ্ণতার ধারাবাহিকের উপর স্থাপন করা হয়। চিত্র ১ তীক্ষ্ণতা উপলব্ধির উদাহরণ দেখায়। শ্রবণ প্রক্রিয়া চলাকালীন, প্রত্যেক শব্দকে পুনরাবৃত্তি প্যাটার্নের জন্য বিশ্লেষণ করা হয় (চিত্র ১: কমলা তীর দেখুন) এবং ফলাফলগুলি শ্রুতি কর্টেক্সে নির্দিষ্ট উচ্চতা (অষ্টক) এবং ক্রোমা (নোটের নাম) এর একক তীক্ষ্ণতা হিসাবে প্রেরণ করা হয়। সময়কাল সময়কাল হলো কোনো একটি শব্দের উপস্থিতি কতটা "স্বল্প" বা "দীর্ঘ" এবং এটি শব্দের স্নায়ু প্রতিক্রিয়া দ্বারা নির্মিত সূচনা এবং সমাপ্তি সংকেতের সাথে সম্পর্কিত। শব্দের প্রথম সনাক্তকরণের পর থেকে শুরু করে শব্দটি পরিবর্তন হওয়া বা বন্ধ হওয়া অবধি শব্দের সময়কাল স্থায়ী হয়। কখনও কখনও এটি কোনও শব্দের ভৌত সময়কালের সাথে সরাসরি সম্পর্কিত হয় না। উদাহরণস্বরূপ, কোলাহলপূর্ণ পরিবেশে, বিরতিসম্পন্ন শব্দগুলি (যে শব্দগুলি থেমে থেমে উৎপন্ন হয়) একই সাধারণ ব্যান্ডউইথের শব্দগুলির বাধা কারণে সমাপ্তি বার্তাগুলি হারিয়ে যাওয়ায় বিরতিহীন শুনাতে পারে। চিত্র ২ সময়কাল সনাক্তকরণের একটি উদাহরণ দেয়। যখন একটি নতুন শব্দ লক্ষ্য করা হয় (চিত্র ২ এর সবুজ তীরগুলি দেখুন), তখন শ্রুতি কর্টেক্সে একটি শ্রুতি প্রারম্ভিক বার্তা প্রেরণ করা হয়। পুনরাবৃত্তি প্যাটার্নটি মিস হয়ে গেলে তখন শব্দ সমাপ্তির বার্তা প্রেরণ করা হয়। শব্দোচ্চতা শব্দোচ্চতা হলো কোনো শব্দ কতো "জোরে" বা "আস্তে" অনুভূত হচ্ছে, এবং এটি থিটা পূর্ণ তরঙ্গের সময়কালে মোট শ্রাবণ স্নায়ু উদ্দীপনা সংখ্যার সাথে সম্পর্কিত। এর অর্থ হলো সংক্ষিপ্ত সময়কালের ক্ষেত্রে একই তীব্রতা স্তরের স্বল্প সময়ের শব্দ দীর্ঘক্ষণ যাবত উপস্থিত শব্দের তুলনায় আস্তে শুনাতে পারে। প্রায় ২০০ মিলিসেকেন্ড এর বেশি সময়ের ক্ষেত্রে এটি হয় না এবং শব্দের সময়কাল শব্দের আপাত উচ্চতাকে প্রভাবিত করে না। চিত্র ৩ শ্রুতি কর্টেক্সে প্রেরণের আগে প্রায় ২০০ মিলিসেকেন্ড সময়কালে কীভাবে শব্দোচ্চতার তথ্য যোগ করা হয় তার একটি ধারণা দেয়। সুউচ্চ সংকেতগুলি বেসিলার ঝিল্লিতে বৃহত্তর 'ধাক্কা' দেয় এবং এর ফলে আরও অধিক স্নায়ুকে উদ্দীপিত করে আরও জোরে সংকেত তৈরি করে। আরও জটিল সংকেত সাইন তরঙ্গের মতো সাধারণ শব্দের চেয়ে আরও বেশি স্নায়ু উদ্দীপনা তৈরি করে এবং তাই একই বিস্তারের তরঙ্গ আরও জোরে শব্দ করে। জাতি জাতিকে বিভিন্ন শব্দের (যেমন একটি পতিত শিলার শব্দ, একটি ড্রিলের ঘূর্ণি, একটি বাদ্যযন্ত্রের সুর বা একটি কণ্ঠের গুণমান) গুনমান হিসাবে ধরা হয় এবং এটি একটি শব্দের ধ্বনিত পরিচয়ের প্রাক-সচেতন বরাদ্দকে উপস্থাপন করে (উদাঃ "এটি একজন শ্রোতা!")। এই পরিচয়টি কম্পাঙ্ক স্থানান্তরকারী, কোলাহলমুখরতা, অস্থিরতা, অনুভূত তীক্ষ্ণতা এবং বর্ধিত সময় কাঠামোর উপর শব্দে অতিস্বরের বিস্তার এবং তীব্রতা থেকে প্রাপ্ত তথ্যের উপর নির্ভর করে। সময়ের সাথে সাথে একটি শব্দ যেভাবে পরিবর্তিত হয় (চিত্র ৪ দেখুন) তা জাতি সনাক্তকরণের জন্য বেশিরভাগ তথ্য সরবরাহ করে। যদিও প্রতিটি বাদ্যযন্ত্র থেকে নির্গত তরঙ্গরূপের একটি ছোট অংশ প্রায় একই রকম দেখাচ্ছে (চিত্র ৪-এ কমলা তীরগুলি দ্বারা নির্দেশিত প্রসারিত অংশগুলি দেখুন), তবে সানাই এবং পিয়ানোর মধ্যে শব্দোচ্চতা এবং সমমেল উভয় ক্ষেত্রেই সময়ের সাথে পরিবর্তনের পার্থক্য স্পষ্ট। সানাইতে বায়ুর হিস্ হিস ধ্বনি এবং পিয়ানোতে হাতুড়ি আঘাতের ধ্বনিসহ বিভিন্ন হৈচৈ শব্দ কমই লক্ষণীয়। ধ্বনিতরঙ্গের অঙ্গবিন্যাস ধ্বনিতরঙ্গের অঙ্গবিন্যাস শব্দ উৎসের সংখ্যা এবং তাদের মধ্যে মিথস্ক্রিয়তার সাথে সম্পর্কিত। এই প্রসঙ্গে 'অঙ্গবিন্যাস' শব্দটি শ্রুতি সামগ্রীর প্রত্যক্ষভিত্তিক পৃথকীকরণের সাথে সম্পর্কিত। সংগীতে অঙ্গবিন্যাসকে প্রায়শই সংগতি, পলিফোনি এবং হোমোফোনির মধ্যে পার্থক্য হিসাবে উল্লেখ করা হয়, তবে এটিকে একটি ব্যস্ত রেস্তোরার (উদাহরণস্বরূপ) শব্দের সাথে তুলনা করা যাতে পারে; যা 'ক্যাকোফনি' হিসাবে পরিচিত। তবে অঙ্গবিন্যাস দ্বারা এর থেকে আরও বেশি বিশয়বস্তুকে বোঝায়। বাদকের সংখ্যার ভিন্নতার কারণে একটি অর্কেস্ট্রালের অঙ্গবিন্যাস পিতল পঞ্চকের অঙ্গবিন্যাস থেকে খুব আলাদা। বিভিন্ন শব্দ উৎসের পার্থক্যের কারণে একটি বাজারে শব্দের অঙ্গবিন্যাস একটি স্কুল হল থেকে খুব আলাদা হয়। স্থানিক অবস্থান স্থানিক অবস্থান পরিবেশের প্রেক্ষাপটে শব্দের অবস্থানের নানাবিধ দিক নিয়ে আলোচনা করে। এর মধ্যে রয়েছে আনুভূমিক ও উল্লম্ব তলে শব্দের অবস্থান, উৎস থেকে দূরত্ব এবং সনিক পরিবেশের বৈশিষ্ট্যাবলী। পুরু গঠনবিশিষ্ট স্থানেও বিভিন্ন উৎস থেকে আসা শব্দকে স্থানীয়ভাবে পৃথক করা যায় এবং এর সুর চিহ্নিত করা যায়। এর ফলে অর্কেস্ট্রাতে ওবোর সুর আলাদাভাবে চিহ্নিত করা যায় কিংবা কোনো পার্টিতে একজন ব্যক্তির কথা আলাদাভাবে শোনা যায়। শব্দের চাপের স্তর শব্দের চাপ হলো একটি নির্দিষ্ট মাধ্যমের মধ্যে সাধারণ গড় চাপ এবং শব্দ তরঙ্গের মধ্যে চাপের মধ্যে পার্থক্য। এই পার্থক্যের বর্গ (অর্থাৎ সাম্যাবস্থার চাপ থেকে বিচ্যুতির বর্গ) সাধারণত সময় এবং/অথবা স্থানের সাথে গড় করা হয় এবং এই গড়ের বর্গমূল একটি গড় বর্গের বর্গমূল (আরএমএস) মান সরবরাহ করে। উদাহরণস্বরূপ, বায়ুমণ্ডলে ১ প্যাসকেল আরএমএস শব্দের চাপ (৯৪ dBSPL) দ্বারা বুঝায় যে শব্দ তরঙ্গের আসল চাপ (1 atm Pa) এবং (1 atm Pa) বা ১০১৩২৩.৬ থেকে ১০১৩২৬.৪ Pa এর মধ্যে দোদুল্যমান। যেহেতু মানুষের কান বিস্তৃত বিস্তারের শব্দ শনাক্ত করতে পারে তাই শব্দের চাপকে প্রায়শই লগারিদমিক ডেসিবেল স্কেলে স্তর হিসাবে পরিমাপ করা হয়। শব্দের চাপের স্তর (sound pressure level, SPL) বা Lp কে সংজ্ঞায়িত করা যায়, যেখানে p হলো শব্দের গড় বর্গচাপের বর্গমূল এবং হলো একটি প্রসঙ্গ শব্দ চাপ। আনসি S1.1-1994 এ অনুযায়ী সাধারণভাবে ব্যবহৃত প্রসঙ্গ শব্দের চাপ হলো বায়ুতে ২০ µPa এবং পানিতে ১ µPa। কটি নির্দিষ্ট প্রসঙ্গ শব্দ চাপ ছাড়া ডেসিবেলে প্রকাশিত মান একটি শব্দ চাপ স্তরকে উপস্থাপন করতে পারে না। শ্রবণাতীত শব্দ শ্রবণাতীত শব্দ হলো ২০,০০০ হার্জ (বা ২০ কিলোহার্জ) এর অধিক কম্পাঙ্কবিশিষ্ট শব্দ। ভৌত বৈশিষ্ট্যের দিক থেকে শ্রবণাতীত শব্দ বা আল্ট্রাসাউন্ড "সাধারণ" (শ্রাব্য) শব্দের থেকে ভিন্ন নয়, এটি কেবল মানুষ শুনতে পায় না। আল্ট্রাসাউন্ড যন্ত্রসমূহ ২০ কিলোহার্জ থেকে কয়েক গিগাহার্জ পর্যন্ত কম্পাঙ্ক নিয়ে কাজ করে। আল্ট্রাসাউন্ড সাধারণত মেডিক্যাল ডায়াগনস্টিক যেমন সোনগ্রামের জন্য ব্যবহৃত হয়। অবশ্রাব্য শব্দ অবশ্রাব্য শব্দ বা ইনফ্রাসাউন্ড হলো ২০ হার্জের চেয়ে কম কম্পাঙ্কবিশিষ্ট শব্দ তরঙ্গ। যদিও এরকম কম কম্পাঙ্কবিশিষ্ট শব্দ মানুষের শোনার জন্য খুবই কম, তবে তিমি, হাতি এবং অন্যান্য প্রাণী ইনফ্রাসাউন্ড সনাক্ত করতে পারে এবং যোগাযোগের জন্য এটি ব্যবহার করতে পারে। আরও দেখুন শব্দের উৎস হেডফোন বাদ্যযন্ত্র সোনার সাউন্ড বক্স শব্দ পুনরুৎপাদন </div> শব্দ পরিমাপ শব্দের সংরোধ শব্দের বেগ গুণগত প্রতিবন্ধকতা মেল স্কেল কণার ত্বরণ কণার বিস্তার ফন সোন শব্দের ক্ষমতা শব্দের ক্ষমতা স্তর </div> সাধারণ শব্দবিজ্ঞান তত্ত্ব বীট ডপলার ক্রিয়া প্রতিধ্বনি অবশ্রাব্য শব্দ অব্যক্ত শব্দের তালিকা অনুনাদ </div> তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Sounds Amazing; a KS3/4 learning resource for sound and waves (uses Flash) HyperPhysics: Sound and Hearing Introduction to the Physics of Sound Hearing curves and on-line hearing test Audio for the 21st Century Conversion of sound units and levels Sound calculations Audio Check: a free collection of audio tests and test tones playable on-line More Sounds Amazing; a sixth-form learning resource about sound waves শব্দ (ধ্বনি) শ্রবণ তরঙ্গ শব্দবিজ্ঞান শ্রবণশক্তি
https://en.wikipedia.org/wiki/Sound
Sound
In physics, sound is a vibration that propagates as an acoustic wave through a transmission medium such as a gas, liquid or solid. In human physiology and psychology, sound is the reception of such waves and their perception by the brain. Only acoustic waves that have frequencies lying between about 20 Hz and 20 kHz, the audio frequency range, elicit an auditory percept in humans. In air at atmospheric pressure, these represent sound waves with wavelengths of 17 meters (56 ft) to 1.7 centimeters (0.67 in). Sound waves above 20 kHz are known as ultrasound and are not audible to humans. Sound waves below 20 Hz are known as infrasound. Different animal species have varying hearing ranges.
1272
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%86%E0%A6%B2%E0%A7%8B
আলো
আলো এক ধরনের শক্তি বা বাহ্যিক কারণ, যা চোখে প্রবেশ করে দর্শনের অনুভূতি জন্মায়। অথবা বলা যায়, আলো একটি তীর্যক, তড়িৎ-চৌম্বকীয় তরঙ্গ যা সাধারণ মানুষ দেখতে পারে। আলো বস্তুকে দৃশ্যমান করে, কিন্তু এটি নিজে অদৃশ্য। আমরা আলোকে দেখতে পাই না, কিন্তু আলোকিত বস্তুকে দেখি। আলো এক ধরনের বিকীর্ণ শক্তি। এটি এক ধরনের তরঙ্গ। আলো তীর্যক তড়িৎচুম্বকীয় তরঙ্গের আকারে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে গমন করে। মাধ্যমভেদে আলোর বেগের পরিবর্তন হয়ে থাকে। আলোর বেগ মাধ্যমের ঘনত্বের ব্যস্তানুপাতিক। শুন্য মাধ্যমে আলোর বেগ সবচেয়ে বেশি, আলোর বেগ অসীম নয়। শূন্যস্থানে আলোর বেগ প্রতি সেকেন্ডে ২৯,৯৭,৯২,৪৫৮ মিটার বা ১,৮৬,০০০ মাইল। কোন ভাবেই আলোর গতিকে স্পর্শ করা সম্ভব নয়। আলোর বেগ ধ্রুব। আলোর কোনো আপেক্ষিক বেগ নেই ।আলোর বেগ সর্বদা সমান। দৃশ্যমান আলো মূলত তড়িৎ চুম্বকীয় বর্ণালির ছোট একটি অংশ মাত্র। মানুষ ৪০০ ন্যানোমিটার থেকে ৭০০ ন্যানোমিটার তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের তড়িৎ চুম্বকীয় তরঙ্গ দেখতে পায় । সাদা আলো সাতটি রঙের মিশ্রণ, প্রিজম এর দ্বারা আলোকে বিভিন্ন রঙে (৭টি রঙ) আলাদা করা যায়। যা আমরা রংধনু দেখতে পাই। আলোর প্রতিফলন, প্রতিসরন, আপবর্তন, ব্যাতিচার হয়। আশ্চর্যের বিষয় হচ্ছে আলোর একই সাথে কণা ধর্ম ও তরঙ্গ ধর্ম বিদ্যমান। দীপ্তমান বস্তু থেকে আলো কীভাবে আমাদের চোখে আসে তা ব্যাখ্যার জন্য বিজ্ঞানীরা এ পর্যন্ত চারটি তত্ত্ব প্রদান করেছেন। যথা- ১. স্যার আইজ্যাক নিউটনের কণা তত্ত্ব (Corpuscular Theory) ২. বিজ্ঞানী হাইগেন এর তরঙ্গ তত্ত্ব (Wave Theory) ৩. ম্যাক্সওয়েলের তড়িতচৌম্বক তত্ত্ব (Electromagnetic Theory) ৪. ম্যাক্স প্লাঙ্ক এর কোয়ান্টাম তত্ত্ব (Quantum Theory) ১৯০৫ সালে আলোর কোয়ান্টাম তত্ত্বের সাহায্যে আইন্সটাইন এ ঘটনার ব্যাখ্যা দেন, সেজন্য তাকে ১৯২১ সালে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়। আলোকীয় পথ আলােকীয় পথ : কোনাে মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট (জ্যামিতিক) পথ অতিক্রম করতে আলােকের যে সময় লাগে ঠিক সেই সময়ে শূন্য বা বায়ু মাধ্যমের মধ্যদিয়ে আলােক যে পরিমাণ পথ অতিক্রম করতে পারে, সে পথকে আলােকীয় পথ বলে। আলোক পথ ও ফার্মাটের নীতি ১৬৫০ সালে পিয়েরে ফার্মাট আলোকপথ সংক্রান্ত একটি নীতি দেন যা ফার্মাটের নীতি নামে পরিচিত। এই নীতি অনুসারে "যখন কোন আলোক রশ্মি প্রতিফলন বা প্রতিসরণের সূত্র মেনে কোন সমতল পৃষ্ঠে প্রতিফলিত বা প্রতিসৃত হয়, তখন তা সর্বদা ক্ষুদ্রতম পথ অনুসরণ করে।" আমরা জানি, আলোকরশ্মি কোন একটি বিন্দু হতে চলে সমতল পৃষ্ঠ কর্তৃক প্রতিফলন বা প্রতিসরণের পর অন্য কোন দূরত্বে পৌঁছাতে যদি কম দূরত্ব অতিক্রম করে তবে ঐ দূরত্বে পৌঁছাতে যে সময় লাগে তাও সর্বাপেক্ষা কম সময় হয়। এখন আলোকরশ্মির ক্ষুদ্রতম পথ বা নূন্যতম সময় বিষয়ক যে নীতি তা কেবল সমতল পৃষ্ঠের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য। গোলকীয় তলে এর ব্যতিক্রম দেখা যায়,তখন আলোকরশ্মি হয় ক্ষুদ্রতম না হয় দীর্ঘতম পথ অতিক্রম করবে। তবে আলোকপথ সর্বদা স্থির থাকবে। আলোর প্রতিফলন আলো যখন বায়ু বা অন্য স্বচ্ছ মাধ্যমের ভিতর দিয়ে যাওয়ার সময় অন্য কোনো মাধ্যমে বাধা পায় তখন দুই মাধ্যমের বিভেদতল থেকে কিছু পরিমাণ আলো প্রথম মাধ্যমে ফিরে আসে, একে আলোর প্রতিফলন বলে। যে পৃষ্ঠ থেকে বাধা পেয়ে আলোক রশ্মি ফিরে আসে তাকে আলোক পৃষ্ঠ বলে। আপতিত আলোর কতটুকু প্রতিফলিত হবে তা দুটি বিষয়ের উপর নির্ভর করে; যথাঃ- ১. আপতিত আলো প্রতিফলকের উপর কত কোণে আপতিত হচ্ছে; এবং ২. প্রথম ও দ্বিতীয় মাধ্যমের প্রকৃতি। আলোর প্রতিফলনের সূত্র— আপতিত রশ্মি, প্রতিফলিত রশ্মি ও আপতন বিন্দুতে প্রতিফলকের ওপর অঙ্কিত অভিলম্ব সর্বদা একই সমতলে থাকে। আপতন কোণ ও প্রতিফলন কোণের মান সর্বদা সমান হয়। প্রতিফলক পৃষ্ঠের প্রকৃতি অনুসারে প্রতিফলন দুই প্রকারের হতে পারে; যথা– ১. নিয়মিত প্রতিফলন (Regular Reflection) ২. ব্যাপ্ত প্রতিফলন (Diffused Reflection) আলোর প্রতিসরণ ভিন্ন ঘনত্বের দুইটি স্বচ্ছ মাধ্যমের বিভেদ তলে আলো যদি তির্যকভাবে আপাতিত হয়, তাহলে দ্বিতীয় মাধ্যমে প্রবেশের সময় রশ্মির দিক পরিবর্তিত হয়। এ দিক পরিবর্তন হওয়াকে আলোর প্রতিসরণ বলে। আলোর প্রতিসরণের সূত্র আপতিত রশ্মি, প্রতিসৃত রশ্মি ও আপতন বিন্দুতে দুই মাধ্যমের বিভেদতলের ওপর অঙ্কিত অভিলম্ব সর্বদা একই সমতলে থাকে। দুটি নির্দিষ্ট মাধ্যমের বিভেদতলে, নির্দিষ্ট বর্ণের আলোকরশ্মির প্রতিসরণে, আপতন কোণের sine ও প্রতিসরণ কোণের sine এর অনুপাত (প্রতিসরাঙ্ক) সর্বদা সমান হয়। সুতরাং, sin i/sin r = μ তথ্যসূত্র পদার্থবিজ্ঞান মূল বিষয়ের নিবন্ধ বিকিরণ
https://en.wikipedia.org/wiki/Light
Light
Light, visible light, or visible radiation is electromagnetic radiation that can be perceived by the human eye. Visible light spans the visible spectrum and is usually defined as having wavelengths in the range of 400–700 nanometres (nm), corresponding to frequencies of 750–420 terahertz. The visible band sits adjacent to the infrared (with longer wavelengths and lower frequencies) and the ultraviolet (with shorter wavelengths and higher frequencies), called collectively optical radiation. In physics, the term "light" may refer more broadly to electromagnetic radiation of any wavelength, whether visible or not. In this sense, gamma rays, X-rays, microwaves and radio waves are also light. The primary properties of light are intensity, propagation direction, frequency or wavelength spectrum, and polarization. Its speed in vacuum, 299792458 m/s, is one of the fundamental constants of nature. Like all types of electromagnetic radiation, visible light propagates by massless elementary particles called photons that represents the quanta of electromagnetic field, and can be analyzed as both waves and particles. The study of light, known as optics, is an important research area in modern physics. The main source of natural light on Earth is the Sun. Historically, another important source of light for humans has been fire, from ancient campfires to modern kerosene lamps. With the development of electric lights and power systems, electric lighting has effectively replaced firelight.
1275
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%A8
যানবাহন
যানবাহন ( হতে) হলো এক স্থান হতে অন্য স্থানে যাতায়াত ও মালামাল পরিবহনের জন্য ব্যবহার করা যান্ত্রিক মাধ্যম। অধিকাংশ যানবাহনই মানুষের তৈরী, যেমন, বাইসাইকেল, গাড়ি, ট্রেন, জাহাজ, এবং উড়োজাহাজ। তবে অনেক ক্ষেত্রে প্রাকৃতিক অনেক বস্তুও পরিবহনের কাজে ব্যবহৃত হয় , যেমন হিমবাহ, ভাসমান গাছের গুঁড়ি, ইত্যাদি। অনেক ক্ষেত্রেই যানবাহন মানুষ বা পশু দ্বারা চালিত হয়। যেমন, রিকশা, গরুর গাড়ি। তবে কেবল পশু যখন যাতায়াতের কাজে ব্যবহার করা হয় (যেমন ঘোড়া), তখন তাদেরকে যানবাহনের অন্তর্গত হিসাবে ধরা হয় না। স্থলভাগে চালিত অধিকাংশ যানবাহনেই চাকা থাকে। ব্যতিক্রম হলো হোভারক্রাফট, স্নোমোবাইল, স্লেজ, ইত্যাদি। ইতিহাস তথ্যসূত্র আরো দেখুন পরিবহন শিল্পজাত পণ্য
https://en.wikipedia.org/wiki/Vehicle
Vehicle
A vehicle (from Latin vehiculum) is a machine designed for self-propulsion, usually to transport people, cargo, or both. Vehicles include wagons, bicycles, motor vehicles (motorcycles, cars, trucks, buses, mobility scooters), railed vehicles (trains, trams), watercraft (ships, boats, underwater vehicles), amphibious vehicles (screw-propelled vehicles, hovercraft), aircraft (airplanes, helicopters, aerostats), and spacecraft. Ground vehicles can be broadly classified by the type of contact with the ground: wheels, tracks, rails, or skis. ISO 3833-1977 is the international standard for road vehicle types, terms, and definitions.
1276
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B6%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF
শক্তি
পদার্থবিজ্ঞানের ভাষায় শক্তি বলতে কোনো ব্যক্তি বা বস্তুর কাজ করার সামর্থ্যকে বুঝায়। প্রধানত শ‌ক্তি হ‌চ্ছে পদা‌র্থের এমন একটি বৈ‌শিষ্ট্য যার সৃ‌ষ্টি বা ধ্বংস নেই , এক রূপ থে‌কে অন্য রূপ নি‌তে পা‌রে এবং এক বস্তু থে‌কে অন্য বস্তুতে যেতে পারে। বিখ্যাত E=mc² অনুযা‌য়ী শ‌ক্তি পদা‌র্থে নি‌হিত থাক‌তে পা‌রে । যেমন ফিশন বি‌ক্রিয়া । কাজ বা কার্য হচ্ছে বল ও বলের দিকে সরণের গুণফল। কৃতকাজের পরিমাণ দিয়েই শক্তি পরিমাপ করা হয়। অর্থাৎ বস্তুর শক্তি হচ্ছে ঐ বস্তু মোট যতখানি কাজ করতে পারে। সুতরাং কাজের একক ও শক্তির একক অভিন্ন - জুল। ১ জুল = ১ নিউটনХ ১ মিটার। শক্তি একটি অদিক রাশি। শক্তির রূপ শক্তির বিভিন্ন রূপ আছে। মোটামুটিভাবে শক্তির নয়টি রূপ দিয়ে প্রাকৃতিক সব ঘটনার ব্যাখ্যা দেয়া হয়। শক্তির রূপগুলি হল: যান্ত্রিক শক্তি আলোক শক্তি শব্দ শক্তি তাপ শক্তি চৌম্বক শক্তি তড়িৎ শক্তি পারমাণবিক শক্তি রাসায়নিক শক্তি সৌর শক্তি শক্তির রূপগুলোর সংজ্ঞাসমূহ যান্ত্রিক শক্তি : যান্ত্রিক শক্তি হলো সেই শক্তি, যা কোনো বস্তু তার স্থির অবস্থান বা গতিশীল অবস্থার জন্য লাভ করে​। আলোক শক্তি : যে শক্তি আমাদের চোখে প্রবেশ করে দর্শনের অনুভূতি জন্মায় তাই আলোক শক্তি। শব্দ শক্তি : শব্দ শক্তি হল একধরনের কম্পন যা গ্যাস, তরল বা কঠিন মাধ্যমের সাহায্যে শব্দ তরঙ্গ হিসাবে সঞ্চালিত হয়। তাপ শক্তি : যে শক্তি আমাদের শরীরে ঠান্ডা বা গরমের অনুভূতি তৈরি করে তাই তাপ শক্তি। চৌম্বক শক্তি : যে শক্তির ফলে এক পদার্থ কর্তৃক অন্য কোন পদার্থ আকর্ষিত বা বিকর্ষিত হয়। তড়িৎ শক্তি : বৈদ্যুতিক শক্তি একটি যৌগিক শক্তি যা বৈদ্যুতিক বিভবশক্তি ও গতিশক্তি থেকে উদ্ভূত হয়ে থাকে। পারমাণবিক শক্তি : পরমাণুকেন্দ্র তথা নিউক্লিয়াসকে ভাঙ্গার পর যে শক্তি পাওয়া যায় বা এর অভ্যন্তরে যে শক্তি সঞ্চিত থাকে তাকে পারমাণবিক বা নিউক্লীয় শক্তি বলে। রাসায়নিক শক্তি : সকল জীবদেহে বিভিন্ন ধরনের রাসায়নিক বিক্রিয়া সম্পন্ন হয়। এ সকল রাসায়নিক বিক্রিয়া থেকে যে শক্তি উৎপন্ন হয় তাকে রাসায়নিক শক্তি বলা হয়। কোন পদার্থের মধ্যে একটি পরমাণু আর একটি পরমাণুর সাথে বা একটি অনু অন্য একটি অনুর সাথে যে আকর্ষণ শক্তির সাহায্যে যুক্ত থাকে তাকে রাসায়নিক শক্তি বলে। সৌরশক্তি : মূলত সূর্য থেকে পাওয়া শক্তি হল সৌরশক্তি। তবে আমরা যখন সূর্য হতে প্রাপ্ত শক্তিকে কাজে লাগাই তখনই এটি সৌরশক্তি হিসেবে গণ্য হয়। শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি শক্তির যে কোন রূপকে অন্য যে কোন রূপে রূপান্তরিত করা যায়, কিন্তু মোট শক্তির পরিমাণ একই থাকে। একে শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি বা শক্তির নিত্যতা সূত্র বলা হয়। শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতিকে এভাবে বিবৃত করা যায়ঃ শক্তির সৃষ্টি বা বিনাশ নেই, শক্তি কেবল একরূপ থেকে অপর এক বা একাধিকরূপে পরিবর্তিত হতে পারে। মহাবিশ্বের মোট শক্তির পরিমাণ নির্দিষ্ট ও অপরিবর্তনীয়। শক্তি একরূপ থেকে অন্য রূপে পরিবর্তিত হলে শক্তির কোন ক্ষয় হয় না। একটি বা একাধিক বস্তু যে পরিমাণ শক্তি হারায়, অন্য এক বা একাধিক বস্তু ঠিক একই পরিমাণ শক্তি পায়। নতুন করে কোন শক্তি সৃষ্টি হয় না বা কোন শক্তি ধ্বংসও হয়না। সুতরাং এই মহাবিশ্ব সৃষ্টির মুহূর্তে যে পরিমাণ শক্তি ছিল, এখনও ঠিক সেই পরিমাণ শক্তিই আছে। কাজ-শক্তি উপপাদ্য কোন বস্তুর উপর কৃত কাজ তার গতিশক্তির পরিবর্তনের সমান। অর্থাৎ যেহেতু কোন বস্তুর উপর কাজ করলে তা বস্তুকে গতি দেয়, আবার যেহেতু ঐ গতিকে কাজে রূপান্তর করা সম্ভব (তাকে থামিয়ে দিতে গিয়ে), সেহেতু আমরা বলি ঐ বস্তুতে (গতি)শক্তি এসেছে। শক্তি ক্ষেত্রে ব্যাপক ধরনের ইতিবাচক পরিবর্তন ২০১৫-১৬ অর্থবছরের ‘অর্থনৈতিক সমীক্ষা’ অনুযায়ী, শক্তি ক্ষেত্রে বিভিন্ন ধরনের ব্যাপক পরিবর্তনের বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। শক্তি ক্ষেত্রের এই পরিবর্তনগুলির মধ্যে রয়েছে – ১)উৎপাদন ক্ষমতায় রেকর্ড পরিমান। ২০১৪-১৫-য় সর্বোচ্চ পরিমাণ উৎপাদন ক্ষমতা পরিলক্ষিত হয় ২৬.৫ গিগাওয়াট যা বিগত ৫ বছরে বার্ষিক প্রায় ১৯ গিগাওয়াট হারে বৃদ্ধির চেয়ে অনেকটা বেশি। ২)শক্তি ক্ষেত্রে ক্ষমতা বৃদ্ধি তুলনাহীন। এইসব ব্যবস্থা ভারতের বিদ্যুৎ চাহিদার সর্বোচ্চ ঘাটতির পরিমাণ ২.৪ শতাংশে কমিয়ে এনেছে, যা সর্বকালের মধ্যে সর্বনিম্ন। ৩)শক্তি বন্টনকারী সংস্থাগুলি কার্যকলাপ উন্নয়নে একটি ব্যাপক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। উদ্যোগগুলি হল- উদয় বা উজ্জ্বল ডিসকম্‌ অ্যাস্যুরেন্স যোজনা। ৪)ভারতীয় রেল শক্তি সম্পদ ক্রয়ের জন্য একটি ‘ওপেন এক্সেস’ বা ‘উন্মুক্ত পন্থা’য় যাবার জন্য প্রয়াস নিচ্ছে। ৫)পুনর্নবীকরণ একটি বড় ধরনের নীতিগত জোর পেয়েছে। ২০২২-এর মধ্যে উৎপাদন ৩২ গিগাওয়াট থেকে বাড়িয়ে ১৭৫ গিগাওয়াট করার সংশোধিত লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করা হয়েছে। ৬)ন্যাশনাল সোলার মিশন-এর আওতায় সর্বশেষ দফায় নিলামে বিদ্যুৎ মাসুল বা ট্যারিফের পরিমাণ সর্বকালের মধ্যে কমে গিয়ে প্রতি ঘন্টা কিলোওয়াটে ৪.৩৪ টাকায় দাঁড়িয়েছে। ৭)‘শক্তি ক্ষেত্রে এক বাজার’-এর দিকে অগ্রসর হওয়ার লক্ষ্যে পৌঁছানোর লক্ষ্মনগুলি স্পষ্ট হয়ে উঠছে। এই সব বড় ধরনের সাফল্যগুলি সত্ত্বেও অর্থনৈতিক সমীক্ষা এটা লক্ষ্য করেছে যে শক্তি ক্ষেত্রের জটিলতা এতটাই যাতে হতাশাব্যঞ্জক সমস্যা বহাল রয়েছে।বিশেষ করে: বাজারে মূল্য সংকেতকে যথেষ্টভাবে মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে ট্যারিফ ব্যবস্থার জটিলতার জন্য অর্থনৈতিক উপাদানগুলি বাধাপ্রাপ্ত হয়। বিদ্যুৎ সরবরাহের গড় ব্যয়ের তুলনায় কোনো কোনো ক্ষেত্রে গড় ট্যারিফের পরিমাণ অনেকটাই কম রাখা হয়। শিল্পক্ষেত্রে উচ্চ হারে বিদ্যুৎ মাশুল এবং বিদ্যুতের গুণমানে তারতম্য “মেক ইন ইন্ডিয়া”-র উপর ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে। উন্মুক্ত পদ্ধতির মাধ্যমে দেশ জুড়ে একই বিদ্যুৎ মূল্য নির্ধারণের পথে মূল্য ও মূল্য-বহির্ভুত বিষয়গুলি বাধা হয়ে দাঁড়ায়। গৃহস্থ ভোক্তাদের জন্য ‘প্রোগ্রেসিভ ট্যারিফ সিডিউল’ নির্ধারণ করা। এই সমীক্ষায় শক্তিক্ষেত্রের জন্য কয়েকটি দীর্ঘমেয়াদী নীতি বিষয়ে আলোচনা করেছে যা নিচে উল্লেখ করা হল: ক) বিদ্যুৎ শুল্ক বা মাশুল ব্যবস্থা বর্তমানে খুবই জটিল। উদাহরণ হিসেবে বলা যায়, কয়েকটি রাজ্যে পোল্ট্রি ফার্ম, মৎস চাষ, জলাভূমিতে চাষ (নির্দিষ্ট আয়তনের উর্দ্ধে ও নিচে), মাশরুম ও খরগোশ ফার্ম ইত্যাদি জন্য পৃথক পৃথক শুল্ক ব্যবস্থা রয়েছে। পক্ষান্তরে, অন্যান্য শক্তি-নির্ভর উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিভিন্ন ভোক্তার জন্য একটি নির্দিষ্ট মূল্য রয়েছে। খ)শিল্পক্ষেত্রের উপর উচ্চহারে শুল্ক আরোপের ফলে ফার্মগুলি বিদ্যুৎ ক্রয়ের পথ ছেড়ে নিজেদের বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যবস্থার দিকে সরে যেতে পারে। গ) ৪৭ শতাংশ ফার্ম ডিজেল চালিত জেনারেট ব্যবহার করে। ঘ) ২০০৬-০৭ এবং ২০১৪-১৫-র অন্তর্বতী সময়ে বিভিন্ন ব্যবহারকারী দ্বারা বিদ্যুৎ সংগ্রহের হার বার্ষিক ৪.৬ শতাংশ হারে বৃদ্ধি পেয়েছে, যা ব্যবহারির নিজস্ব বিদ্যুৎ উৎপাদনে ৯.৩ শতাংশ হারে বৃদ্ধির চেয়ে অনেকটাই শ্লথ। ঙ) ‘ডিসকম’-এর ক্ষেত্রে ভারসাম্য আনতে ক্রস-সাবসিডি সারচার্জ এবং মূল্য-বর্হিভূত নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ সমূহ মুখ্য পদক্ষেপ। কিন্তু এরাও দেশ জুড়ে একটি বৈদ্যুতিক বাজার সৃষ্টির পথে বাধা দিতে পারে। চ) অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশের তুলনায়, ভারতের অভ্যন্তরীণ শক্তি ক্ষেত্রের শুল্ক ব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রভূত সুযোগ রয়েছে। ধনী পরিবারগুলির জন্য বিদ্যুৎ শুল্ক বাড়ানো যেতে পারে, সেক্ষেত্রে গরীবদের জন্য শুল্কের পরিমান কমানো যায়। ২০১৫-১৬-র অর্থনৈতিক সমীক্ষায় পরামর্শ দেওয়া হয়েছে যে উদ্বৃত্ত বিদ্যুৎ দেশের শক্তিক্ষেত্রে সংস্কার চালু রাখার মঞ্চ তৈরি করে দেবে যাতে ভারত শক্তি ক্ষেত্রে ‘এক বাজার’ হয়ে উঠতে পারে, শিল্পক্ষেত্র থেকে চাপের বোঝা কমানো যাবে; ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ দৃষ্টিভঙ্গী অনুযায়ী এটাকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রতিযোগিতামুখী করে তোলা; শুল্ককে সরল ও স্বচ্ছ করে তোলা যেতে পারে; প্রান্তিক অংশের ক্ষেত্রে মূল্য বৃদ্ধি এড়ানো, এবং আরো অধিক পরিমাণে রাজস্ব বৃদ্ধি সহ দরিদ্রের জন্য মূল্যের পরিমাণ কমানোর জন্য যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে সেই লক্ষ্যে সুযোগ গ্রহণ করা। এই সমস্ত কিছুতে, কেন্দ্রের কাছ থেকে সাহায্যকারী সহায়তা সহ, রাজ্য সরকার এবং রাজ্য নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সমীক্ষায় আরও বলা হয়েছে, সহযোগিতামূলক-প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়, যা এখনকার ভারত. পরীক্ষা-নিরীক্ষাকে কার্যকর করতে শক্তি ক্ষেত্র একটি যথাযথ কঠিন পরীক্ষাস্থল। আরও দেখুন কাজ ক্ষমতা বল চাপ দহন তথ্যসূত্র পদার্থবিজ্ঞান,নবম-দশম শ্রেণি,পৃষ্ঠা নং ১০২, এনসিটিবি (http://www.nctb.gov.bd/) বহিঃসংযোগ শক্তির সংরক্ষণশীলতা নীতি শক্তি ও জীবন (Energy and Life) শক্তি বলতে আসলে কী বোঝায়? From Physics World পদার্থবিজ্ঞানের মৌলিক ধারণা মূল বিষয়ের নিবন্ধ শক্তি প্রকৃতি মহাবিশ্বতত্ত্ব
https://en.wikipedia.org/wiki/Energy
Energy
Energy (from Ancient Greek ἐνέργεια (enérgeia) 'activity') is the quantitative property that is transferred to a body or to a physical system, recognizable in the performance of work and in the form of heat and light. Energy is a conserved quantity—the law of conservation of energy states that energy can be converted in form, but not created or destroyed; matter and energy may also be converted to one another. The unit of measurement for energy in the International System of Units (SI) is the joule (J). Common forms of energy include the kinetic energy of a moving object, the potential energy stored by an object (for instance due to its position in a field), the elastic energy stored in a solid object, chemical energy associated with chemical reactions, the radiant energy carried by electromagnetic radiation, and the internal energy contained within a thermodynamic system. All living organisms constantly take in and release energy. Due to mass–energy equivalence, any object that has mass when stationary (called rest mass) also has an equivalent amount of energy whose form is called rest energy, and any additional energy (of any form) acquired by the object above that rest energy will increase the object's total mass just as it increases its total energy. Human civilization requires energy to function, which it gets from energy resources such as fossil fuels, nuclear fuel, or renewable energy. The Earth's climate and ecosystems processes are driven by the energy the planet receives from the Sun (although a small amount is also contributed by geothermal energy).
1277
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%95%E0%A6%9F%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%A8%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8
ইলেকট্রন বিজ্ঞান
ইলেকট্রন বিজ্ঞান ফলিত পদার্থবিজ্ঞান ও তড়িৎ প্রকৌশলের একটি আন্তঃক্ষেত্রীয় শাখা যেখানে বায়ুশূন্য নল (ভ্যাকিউম টিউব), গ্যাস অথবা অর্ধপরিবাহী যন্ত্রাংশের মধ্য দিয়ে বৈদ্যুতিক সঙ্কেত বহনকারী ইলেক্ট্রনের নিঃসরণ, প্রবাহ, নিয়ন্ত্রণ, ব্যবহারিক আচরণ ও প্রক্রিয়া আলোচিত হয়। ১৯০৪ সালে জন অ্যামব্রোস ফ্লেমিং দুইটি তড়িৎ ধারক বৈশিষ্ট সম্পূর্ণ বদ্ধ বায়ুশূন্য কাচের নল (vacuum tube) উদ্ভাবন করেন ও তার মধ্য দিয়ে একমুখী তড়িৎ পাঠাতে সক্ষম হন। তাই সেই সময় থেকে ইলেকট্রন বিজ্ঞানের যাত্রা শুরু হয়েছে বলা যায়। ইংরেজি পরিভাষাতে একে ইলেকট্রনিক্স (ইংরেজি Electronics ইলেকট্রনিক্‌স্‌) বলা হয়। ইলেকট্রন বিজ্ঞান ক্ষেত্রে প্রধানত ইলেকট্রনীয় বর্তনীর নকশা প্রণয়ন এবং পরীক্ষণ করা হয়। ইলেকট্রনীয় বর্তনী সাধারণত রেজিস্টর, ক্যাপাসিটর, ইন্ডাক্টর, ডায়োড প্রভৃতি দ্বারা কোন নির্দিষ্ট কার্যক্রম সম্পাদন করার জন্য তৈরি করা হয়। বেতার যন্ত্রের টিউনার যেটি শুধুমাত্র আকাংক্ষিত বেতার স্টেশন ছাড়া অন্যগুলোকে বাতিল করতে সাহায্য করে, সেটি ইলেকট্রনীয় বর্তনীর একটি উদাহরণ। পাশে আরেকটি উদাহরণের (নিউমেটিক সংকেত কন্ডিশনারের ) ছবি দেওয়া হলো। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগে ইলেকট্রন বিজ্ঞান রেডিও প্রকৌশল বা বেতার প্রকৌশল নামে পরিচিত ছিল। তখন এর কাজের পরিধি রাডার, বাণিজ্যিক বেতার (Radio) এবং আদি টেলিভিশনে সীমাবদ্ধ ছিল। বিশ্বযুদ্ধের পরে যখন ভোক্তা বা ব্যবহারকারী-কেন্দ্রিক যন্ত্রপাতির উন্নয়ন শুরু হল, তখন থেকে প্রকৌশলের এই শাখা বিস্তৃত হতে শুরু করে এবং আধুনিক টেলিভিশন, অডিও ব্যবস্থা, কম্পিউটার এবং মাইক্রোপ্রসেসর (অণুপ্রক্রিয়াকারক বা সমন্বিত বর্তনী) এই শাখার অন্তর্ভুক্ত হয়। পঞ্চাশের দশকের মাঝামাঝি থেকে বেতার প্রকৌশল নামটি ধীরে ধীরে পরিবর্তিত হয়ে দশকের শেষ নাগাদ ইলেকট্রন বিজ্ঞান (ইলেকট্রনিক্‌স) নাম ধারণ করে। উইলিয়াম ব্র্যাডফোর্ড শকলি, জন বারডিন এবং ওয়াল্টার হাউজার ব্র্যাটেইন একসাথে যৌথভাবে ট্রানজিস্টর উদ্ভাবন করেন। ১৯৪৮ সালে ট্রানজিস্টর উদ্ভাবন ও ১৯৫৯ সালে সমন্বিত বর্তনী (integrated circuit or IC) উদ্ভাবনের আগে ইলেকট্রনীয় বর্তনী তৈরি হতো বড় আকারের পৃথক পৃথক বায়ুশূন্য নল যন্ত্রাংশ দিয়ে। এই সব বিশাল আকারের যন্ত্রাংশ দিয়ে তৈরি বর্তনীগুলো বিপুল জায়গা দখল করত এবং এগুলো চালাতে অনেক শক্তি লাগত। এই যন্ত্রাংশগুলির গতিও ছিল অনেক কম। অন্যদিকে সমন্বিত বর্তনী বা আইসি অসংখ্য (প্রায়ই ১০ লক্ষেরও বেশি) ক্ষুদ্রাতিক্ষুদ্র তড়িৎ যন্ত্রাংশ, যাদের বেশিরভাগই মূলত ট্রানজিস্টর দিয়ে গঠিত হয়। এই যন্ত্রাংশগুলোকে একটি ছোট্ট পয়সা আকারের সিলিকন চিলতে বা চিপের উপরে সমন্বিত করে সমন্বিত বর্তনী তৈরি করা হয়। বর্তমানের অত্যাধুনিক কম্পিউটার বা নিত্যপ্রয়োজনীয় ইলেকট্রনীয় যন্ত্রপাতি সবই প্রধানত সমন্বিত বর্তনী বা আই সি দ্বারা নির্মিত। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Definition of electronics, Electronics and You, Retrieved on 2013-07-05. ইলেকট্রনিক প্রকৌশল তড়িৎ প্রকৌশল প্রযুক্তি ইলেকট্রনিক্স মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Electronics
Electronics
Electronics is a scientific and engineering discipline that studies and applies the principles of physics to design, create, and operate devices that manipulate electrons and other electrically charged particles. Electronics is a subfield of physics and electrical engineering which uses active devices such as transistors, diodes, and integrated circuits to control and amplify the flow of electric current and to convert it from one form to another, such as from alternating current (AC) to direct current (DC) or from analog signals to digital signals. Electronic devices have hugely influenced the development of many aspects of modern society, such as telecommunications, entertainment, education, health care, industry, and security. The main driving force behind the advancement of electronics is the semiconductor industry, which in response to global demand continually produces ever-more sophisticated electronic devices and circuits. The semiconductor industry is one of the largest and most profitable sectors in the global economy, with annual revenues exceeding $481 billion in 2018. The electronics industry also encompasses other sectors that rely on electronic devices and systems, such as e-commerce, which generated over $29 trillion in online sales in 2017.
1279
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%B2%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%81
জলবায়ু
জলবায়ু (climate) : কোনো নির্দিষ্ট স্থানের সুদীর্ঘ সময়ের, সাধারণত ৩০-৩৫ বছরের আবহাওয়ার গড় বা সামগ্রিক অবস্থার হিসাবকে জলবায়ু বলে। সাধারণত বৃহৎ এলাকাজুড়ে জলবায়ু নির্ণীত হয়ে থাকে। জলবায়ুর পরিবর্তন আবহাওয়ার পরিবর্তনের উপর নির্ভরশীল। কোনো স্থানের আবহাওয়ার পরিবর্তন একটি স্বাভাবিক ঘটনা। আবহাওয়ার এ পরিবর্তন সাধারণত ঐ স্থানের তাপমাত্রা, আর্দ্রতা, বৃষ্টিপাতের পরিমাণ প্রভৃতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। আর কোনো স্থানের আবহাওয়ার উপাদানগুলোর স্থায়ী পরিবর্তন হলো জলবায়ু পরিবর্তন। কোনো স্থানের জলবায়ু হঠাৎ পরিবর্তিত হয় না। জলবায়ু পরিবর্তন একটি ধীর ও চলমান প্রক্রিয়া। বাংলাদেশের জলবায়ু মোটামুটি উষ্ণ, আর্দ্র ও সমভাবাপন্ন। মৌসুমি বায়ুর প্রভাব এখানে এত অধিক যে, এ জলবায়ু 'ক্রান্তীয় মৌসুমি জলবায়ু' নামে পরিচিত। নিয়ামক জলবায়ু কতিপয় বিষয়ের ভিত্তিতে নির্ধারিত হয়ে থাকে, যেগুলোকে জলবায়ুর নিয়ামক বলা হয়ে থাকে। যথা: অক্ষাংশ অক্ষাংশের ভিন্নতা ও পরিবর্তনের সাথে সাথেই জলবায়ুরও তারতম্য ঘটে। সূর্য কিরণ সারা বছর লম্ব ভাবে পরার কারণে নিরক্ষিয় অঞ্চলে উষ্ণ জলবায়ু বিরাজ করে ।এবং মেরু অঞ্চলের দিকে সূর্য রশ্মি ক্রমশ তির্যক হতে থাকে এবং জলবায়ু শিতল হয়। ফলে নিরক্ষিয় অঞ্চলে ৩২ ডিগ্রী সেলসিয়াস তাপমাত্রা থাকলেও মেরু অঞ্চলে তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে থাকে। নিরক্ষরেখা বরাবর স্থানসমূহে সূর্যরশ্মি খাড়াভাবে পড়ে বিধায় ঐসকল অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি। নিরক্ষরেখা থেকে উত্তর ও দক্ষিণ অক্ষাংশে তাপমাত্রা ক্রমেই কমতে থাকে। ১°সে অক্ষাংশে উষ্ণতা 0.২৮°সে হ্রাস পায় বলেই নিরক্ষরেখা থেকে সবচেয়ে দূরবর্তি উত্তর ও দক্ষিণ মেরু অঞ্চলে বরফ রয়েছে। উচ্চতা উচ্চতার বৃদ্ধিতে তাপমাত্রা হ্রাস পায়। প্রতি ১০০০ মিটার উচ্চতায় ৬.8° সেলসিয়াস তাপমাত্রা হ্রাস পায়। এমনকি উচ্চতার তারতম্যে একই অক্ষাংশে অবস্থিত দুই অঞ্চলের তাপমাত্রা দুরকম হয়। সমুদ্র থেকে দূরত্ব কোনো স্থান সমুদ্র থেকে কতটা দূরে তার প্রেক্ষিতে বাতাসের আর্দ্রতার মাত্রা নির্ভর করে আর আর্দ্রতার প্রেক্ষিতে জলবায়ুর উষ্ণতা অনেকাংশে নির্ভরশীল। সমুদ্র নিকটবর্তি এলাকার বায়ুতে গরমকালে আর্দ্রতা ও শীতকালে মৃদু উষ্ণতা বিরাজ করে। এধরনের জলবায়ুকে সমভাবাপন্ন জলবায়ু বলে।⚡ বায়ুপ্রবাহের দিক সমুদ্র থেকে প্রবাহিত জলীয় বাষ্পপূর্ণ বায়ু যে অঞ্চল দিয়ে বয়ে যায়, সে অঞ্চলে বৃষ্টিপাত বেশি হয়। কিন্তু স্থলভাগ থেকে প্রবাহিত শুষ্ক বায়ু আবার উষ্ণতা বাড়ায়। বৃষ্টিপাত কোনো স্থানে বৃষ্টিপাত হলে সেখানকার উত্তাপ কমে আবার বৃষ্টিপাতহীন অঞ্চলে উষ্ণতা বেশি থাকে। তাই মরুভূমি এলাকায় জলবায়ু উষ্ণ। তাছাড়া বৃষ্টিপাতের মাত্রার উপর আর্দ্রতার মাত্রাও নির্ভরশীল, যা জলবায়ুকে নিয়ন্ত্রণ করে। সমুদ্রস্রোত শীতল বা উষ্ণ সমুদ্রস্রোতের কারণে উপকূলবর্তি এলাকার আবহাওয়ায়ও পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয়। এর উদাহরণ হিসেবে প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণ পানির প্রবাহ এল নিনোর কথা উল্লেখ করা যায়, যার প্রভাবে উপকূলবর্তি দেশগুলোতে দীর্ঘ খরা পর্যন্ত দেখা দিয়েছে। পর্বতের অবস্থান উঁচু পর্বতে বায়ুপ্রবাহ বাধাপ্রাপ্ত হলে আবহাওয়া ও জলবায়ুগত পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। উদাহরণস্বরূপ, হিমালয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়ে মৌসুমী জলবায়ু বাংলাদেশ, ভারত ও নেপালে প্রচুর বৃষ্টিপাত ঘটায়। বনভূমি গাছের প্রস্বেদন ও বাষ্পীভবনের মাধ্যমে জলীয় বাষ্প ঘনীভূত হয়ে বৃষ্টিপাত ঘটায়। বনভূমির প্রগাঢ়তার কারণে কোনো কোনো স্থানে সূর্যালোক মাটিতে পড়ে না, ফলে ঐসকল এলাকা ঠান্ডা থাকে। তাছাড়া বনভূমি ঝড়, সাইক্লোন, টর্নেডো ইত্যাদির গতিপথে বাধা সৃষ্টি করে বায়ুমণ্ডলীয় অবস্থার রূপ বদলে দেয়। ভূমির ঢাল সূর্যকীরণ উঁচু স্থানের ঢাল বরাবর পড়লে ভূমি উত্তপ্ত হয়ে তাপমাত্রা বাড়ে আবার ঢালের বিপরীত দিকে পড়লে তাপমাত্রা অতোটা বাড়ে না। তাছাড়া ঢাল বরাবর লম্বভাবে সুর্যালোকের পতন, তীর্যকভাবে সূর্যালোক পতনের তুলনায় তুলনামূলক উত্তপ্ত আবহাওয়ার সৃষ্টি করে। মাটির বিশেষত্ব বেলেমাটির বিশেষত্ব হলো তা যত দ্রুত গরম হয়, তত দ্রুত ঠান্ডাও হয়। সেই তুলনায় কর্দমযুক্ত পলিমাটি দ্রুত গরমও হয়না, গরম হলে ঠান্ডা হতেও দেরি হয়। তাই কোনো স্থানের মাটির বিশেষত্বের উপর আবহাওয়া ও জলবায়ুর পার্থক্য দেখা দিতে পারে। শ্রেণিবিভাগ গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু নিরক্ষীয় জলবায়ু মৌসুমী জলবায়ু নাতিশীতোষ্ণ জলবায়ু হীমমণ্ডলীয় জলবায়ু আরও দেখুন ভূমণ্ডলীয় উষ্ণতা বৃদ্ধি গ্রীনহাউজ প্রতিক্রিয়া বাস্তুতন্ত্র তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ জলবায়ু আবহাওয়াবিজ্ঞান মূল বিষয়ের নিবন্ধ জলবায়ুবিজ্ঞান
https://en.wikipedia.org/wiki/Climate
Climate
Climate is the long-term weather pattern in a region, typically averaged over 30 years. More rigorously, it is the mean and variability of meteorological variables over a time spanning from months to millions of years. Some of the meteorological variables that are commonly measured are temperature, humidity, atmospheric pressure, wind, and precipitation. In a broader sense, climate is the state of the components of the climate system, including the atmosphere, hydrosphere, cryosphere, lithosphere and biosphere and the interactions between them. The climate of a location is affected by its latitude, longitude, terrain, altitude, land use and nearby water bodies and their currents. Climates can be classified according to the average and typical variables, most commonly temperature and precipitation. The most widely used classification scheme was the Köppen climate classification. The Thornthwaite system, in use since 1948, incorporates evapotranspiration along with temperature and precipitation information and is used in studying biological diversity and how climate change affects it. The major classifications in Thornthwaite's climate classification are microthermal, mesothermal, and megathermal. Finally, the Bergeron and Spatial Synoptic Classification systems focus on the origin of air masses that define the climate of a region. Paleoclimatology is the study of ancient climates. Paleoclimatologists seek to explain climate variations for all parts of the Earth during any given geologic period, beginning with the time of the Earth's formation. Since very few direct observations of climate were available before the 19th century, paleoclimates are inferred from proxy variables. They include non-biotic evidence—such as sediments found in lake beds and ice cores—and biotic evidence—such as tree rings and coral. Climate models are mathematical models of past, present, and future climates. Climate change may occur over long and short timescales due to various factors. Recent warming is discussed in terms of global warming, which results in redistributions of biota. For example, as climate scientist Lesley Ann Hughes has written: "a 3 °C [5 °F] change in mean annual temperature corresponds to a shift in isotherms of approximately 300–400 km [190–250 mi] in latitude (in the temperate zone) or 500 m [1,600 ft] in elevation. Therefore, species are expected to move upwards in elevation or towards the poles in latitude in response to shifting climate zones."
1280
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A7%81%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%20%E0%A6%B8%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%B0
জুলিয়াস সিজার
জুলিয়াস সিজার (পুরো নাম - গাইও জুলিও কায়েসার; লাতিন: CAIVS IVLIVS CAESAR, উচ্চারণ: [ˈɡaː.i.us ˈjuːli.us ˈkaɪsar], প্রাচীন গ্রিক Καίσαρ, Kaisar; জন্ম: ১২ অথবা ১৩ জুলাই ১০১ অথবা ১০০ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ - রো্ম - মৃত্যু ১৫ মার্চ ৪৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ) ছিলেন রোম সাম্রাজ্যের একজন সেনাপতি এবং একনায়ক; এছাড়া লাতিন ভাষায় রচিত তার লেখা গদ্যসাহিত্যও উল্লেখের দাবি রাখে। তাঁকে ইতিহাসে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মধ্যে একজন বলে বিবেচনা করা হয়। যে সমস্ত ঘটনার ফলে তার সমসাময়িক ও ঠিক তার পরবর্তী যুগে রোমের প্রশাসনিক চরিত্রে ব্যাপক পরিবর্তন সাধিত হয় ও রোম একটি গণতন্ত্র থেকে একটি একনায়ককেন্দ্রিক সাম্রাজ্যে পরিণত হয়, সেইসমস্ত ঘটনায় জুলিয়াস সিজারের ভূমিকা ছিল যথেষ্ট উল্লেখযোগ্য। "এলাম দেখলাম জয় করলাম" এটি ছিলো জুলিয়াসের বাণী। অবাক করা বিষয় রোমান সভ্যতা নদী মাতৃক ছিলো না। ৪৯ খ্রীষ্টপূর্বাব্দের শেষপর্যন্ত তিনি রোমের একনায়ক ছিলেন; ৪৭ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ থেকে ৪৬ খ্রীষ্টপূর্বাব্দে প্রায় দশ বছরের দায়িত্বে এবং ৪৪ খ্রীষ্টপূর্বাব্দ অনন্ত একনায়কত্ব হিসেবে। কিছু ইতিহাসবিদের দ্বারা বিবেচনা করা হয়েছিল রোমের প্রথম সম্রাট। তিনি টলেমীয় মিসরের সর্বশেষ সক্রিয় ফারাও ক্লিওপেট্রার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়েন এবং তার গর্ভে সন্তান জন্মগ্রহণ করে। গাল্লীয়া জয়ের সঙ্গে যা আটলান্টিক মহাসাগর এবং রাইনতে, রেস রোমান জনগণ শাসন প্রসারিত করেছিল, প্রথম বারের মত ব্রিটেন এবং জার্মানিদের আক্রমণের জন্য সেখানে রোমান সৈন্যবাহিনী নিয়ে যায় এবং স্পেন, গ্রিস, আফ্রিকা, মিশর এবং পন্তুসতেও যুদ্ধ করে। তথ্যসূত্র আরও দেখুন Gaius Julius Caesar একটি টিকা থেকে অনলাইন দেওয়া। জার্মান জাতীয় লাইব্রেরী তালিকা (জার্মান) জুলিও চেসারের ইতিহাস। বিবিসি ইতিহাস। Grey, D. The Assassination of Caesar , Clio History Journal, 2009. রোম সাম্রাজ্য প্রাচীন রোমান লেখক গুপ্তহত্যার শিকার রাষ্ট্রপ্রধান গুপ্তহত্যার শিকার সামরিক কর্মকর্তা ক্লিওপেট্রা পরিকল্পিত গণহত্যায় অপরাধী খুনের শিকার পুরুষ স্মৃতিকথাকার
https://en.wikipedia.org/wiki/Julius_Caesar
Julius Caesar
Gaius Julius Caesar (12 July 100 BC – 15 March 44 BC) was a Roman general and statesman. A member of the First Triumvirate, Caesar led the Roman armies in the Gallic Wars before defeating his political rival Pompey in a civil war, and subsequently became dictator from 49 BC until his assassination in 44 BC. He played a critical role in the events that led to the demise of the Roman Republic and the rise of the Roman Empire. In 60 BC, Caesar, Crassus, and Pompey formed the First Triumvirate, an informal political alliance that dominated Roman politics for several years. Their attempts to amass political power were opposed by many in the Senate, among them Cato the Younger with the private support of Cicero. Caesar rose to become one of the most powerful politicians in the Roman Republic through a string of military victories in the Gallic Wars, completed by 51 BC, which greatly extended Roman territory. During this time he both invaded Britain and built a bridge across the river Rhine. These achievements and the support of his veteran army threatened to eclipse the standing of Pompey, who had realigned himself with the Senate after the death of Crassus in 53 BC. With the Gallic Wars concluded, the Senate ordered Caesar to step down from his military command and return to Rome. In 49 BC, Caesar openly defied the Senate's authority by crossing the Rubicon and marching towards Rome at the head of an army. This began Caesar's civil war, which he won, leaving him in a position of near-unchallenged power and influence in 45 BC. After assuming control of government, Caesar began a programme of social and governmental reform, including the creation of the Julian calendar. He gave citizenship to many residents of far regions of the Roman Republic. He initiated land reforms to support his veterans and initiated an enormous building programme. In early 44 BC, he was proclaimed "dictator for life" (dictator perpetuo). Fearful of his power and domination of the state, a group of senators led by Brutus and Cassius assassinated Caesar on the Ides of March (15 March) 44 BC. A new series of civil wars broke out and the constitutional government of the Republic was never fully restored. Caesar's great-nephew and adopted heir Octavian, later known as Augustus, rose to sole power after defeating his opponents in the last civil war of the Roman Republic. Octavian set about solidifying his power, and the era of the Roman Empire began. Caesar was an accomplished author and historian as well as a statesman; much of his life is known from his own accounts of his military campaigns. Other contemporary sources include the letters and speeches of Cicero and the historical writings of Sallust. Later biographies of Caesar by Suetonius and Plutarch are also important sources. Caesar is considered by many historians to be one of the greatest military commanders in history. His cognomen was subsequently adopted as a synonym for "Emperor"; the title "Caesar" was used throughout the Roman Empire, giving rise to modern descendants such as Kaiser and Tsar. He has frequently appeared in literary and artistic works.
1282
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8B%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%AF%E0%A7%81%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF
ন্যানোপ্রযুক্তি
ন্যানোপ্রযুক্তি বলতে ন্যানোমাপনীর বস্তুসমূহের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে বোঝায়, যেসব বস্তু সেগুলির গঠনকারী উপাদান পদার্থগুলির বৃহৎ-মাপনীতে এমনকি আণুবীক্ষণিক মাপনীতে প্রদর্শিত ধর্মাবলি অপেক্ষা তাৎপর্যপূর্ণরূপে ভিন্ন ধর্মাবলি প্রদর্শন করে। সাধারণত ন্যানোপ্রযুক্তিতে এমন সব কাঠামো নিয়ে কাজ করা হয় যা অন্তত একটি মাত্রায় ১০০ ন্যানোমিটার থেকে ছোট। কিন্তু এই সংজ্ঞাটি সম্পূর্ণ সঠিক নয়। ন্যানোপ্রযুক্তির সারমর্ম শুধুমাত্র মাত্রার পরিমাপেই সীমাবদ্ধ নয়, বরং এর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল ক্ষুদ্র মাপনীতে উপাদান পদার্থের ধর্মের পরিবর্তন। তাই একটি ২০০ ন্যানোমিটার দৈর্ঘ্যের বস্তুকেও যথার্থ ন্যানো উপাদান গণ্য করা হতে পারে, যদি সেটি বৃহৎ-মাপনী বা আণুবীক্ষণিক (মাইক্রোমিটার) মাপনীতে প্রদর্শনকৃত ধর্মগুলির পরিবর্তে তাৎপর্যপূর্ণরূপে ভিন্ন ধর্মাবলি প্রদর্শন করে। ন্যানোপ্রযুক্তি বহুমাত্রিক, এর সীমানা প্রচলিত অর্ধপরিবাহী পদার্থবিজ্ঞান থেকে শুরু করে অত্যাধুনিক আণবিক স্বয়ং-সংশ্লেষণ প্রযুক্তি পর্যন্ত, কিংবা আণবিক কাঠামোর নিয়ন্ত্রণ থেকে নতুন বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন ন্যানোপদার্থের উদ্ভাবন পর্যন্ত বিস্তৃত। রিচার্ড ফাইনম্যানকে ন্যানোপ্রযুক্তির জনক বলা হয়। ন্যানোপ্রযুক্তির ব্যবহার চিকিৎসাবিজ্ঞান, ইলেকট্রনিক্স, শক্তি উৎপাদনসহ বহু ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন আনতে পারে। অপরদিকে পরিবেশের উপর এর সম্ভাব্য বিরূপ প্রভাব নিয়েও সংশয় রয়েছে। তারপরও পৃথিবীর বহু দেশে ন্যানোপ্রযুক্তি নিয়ে ব্যাপক গবেষণা চলছে। ইতিহাস ১৯৫৯ সালের ২৯ জানুয়ারি রিচার্ড ফাইনম্যান ক্যালিফোর্নিয়া ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজিতে অনুষ্ঠিত আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির এক সভায় There's Plenty of Room at the Bottom শীর্ষক এক বক্তৃতা দেন। এই বক্তৃতাটিই সর্বপ্রথম ন্যানোপ্রযুক্তির ধারণা দেয়। ১৯৮৯ সনের নভেম্বরের ৯ তারিখ ন্যানোটেকনলজির জন্য একটা অন্যতম স্মরণীয় দিন হিসবে বিবেচিত হবে। এই দিনে ক্যালিফোর্নিয়ার IBM এর Almaden Research Center এ Don Eigler এবং Erhard Schweizer ৩৫ টি Xenon অণু দিয়ে IBM এর লগোটি তৈরি করেছিলেন। সেইদিনই প্রথম অণুকে ইচ্ছেমত সাজিয়ে পছন্দমত কিছু তৈরি করা সম্ভব হয় মানুষের পক্ষে। এইদিনই প্রথম মানুষ প্রকৃতির সবথেকে গুরুত্বপূর্ণ ভিত্তি অণুর কাঠামোকে ভাঙতে সক্ষম হয়েছিল। অণুর গঠনকে ইচ্ছেমত তৈরি করে অনেক কিছু করা সম্ভব। এক বিশাল সম্ভাবনার দ্বার মানুষের সামনে উন্মোচিত হল। শুধু মাত্র অণুর কাঠামোগত পার্থক্য হবার কারণেই কয়লা এত সস্তা আর হীরক এত দামী। দুটি জিনিসের মূল উপাদান হল কার্বণ। শুধু মাত্র অণুর গঠনের পার্থক্যের কারণে হীরক পৃথিবীর সবথেকে শক্ত দ্রব্য আর কয়লা কিংবা পেন্সিলের শীষ নরম। ১৯৯৯ সনে Cornell বিশ্ববিদ্যালয়ের Wilson Ho এবং তার ছাত্র Hyojune Lee অণুকে জোড়া লাগানোর প্রক্রিয়া প্রদর্শন করেন। এতদিন পর্যন্ত অণু-পরমাণুর সংযোগ শুধু মাত্র রাসয়নিক বিক্রিয়ার মাধ্যমেই সংগঠিত হত। কিন্তু ন্যানোটেকনলজির মাধ্যমে অণু-পরমাণুকে ভেঙে কিংবা জোড়া লাগিয়ে অনেক কিছুই করার সম্ভাবনার দ্বার খুলে দিল। ন্যানোপ্রযুক্তি কী? ন্যানো একটি মাপার একক। ম্যাট্রিক একক এর শুরুটা হয়েছিল ১৭৯০ সনে ফ্রান্সে। ফ্রান্স জাতীয় পরিষদ এককগুলিকে সাধারণ করবার জন্য কমিটি গঠন করে এবং তারাই প্রথম ডেসিমাল কিংবা দশ একক এর ম্যাট্রিক পদ্ধতির প্রস্তাব করেন। এবং দৈর্ঘ্যের একক এক মিটার এর সূচনা করেন। তারা পৃথিবীর পরিধির ৪০,০০০,০০০ ভাগের এক ভাগকে এক মিটার বলেন। মিটার শব্দটি গ্রিক শব্দ metron থেকে এসেছে যার অর্থ হল, পরিমাপ। এছাড়া মিটার এর ১০০ ভাগের এক ভাগকে সেন্টিমিটার বলা হয়। ১৭৯৩ সনে ফ্রান্সে আইন করে তা প্রচলন করা হয়। ১৯৬০ সনে এই মিটার এর সংজ্ঞা পরিবর্তন করা হয়। ক্রিপটন ৮৬ এর কমলারঙের রেডিয়েশন এর তরঙ্গদৈর্ঘ্যের ১,৬৫০,৭৬৩.৭৩ ভাগের এক ভাগকে মিটার বলা হয়। ১৯৮৩ সনে মিটার এর সংজ্ঞা পুনরায় পরিবর্তিত করা হয়, বর্তমান সংজ্ঞা অনুযায়ী, বায়ুশুন্যে আলোর গতির ২৯৯,৭৯২,৪৫৮ ভাগের এক ভাগকে মিটার বলা হয়। এই মিটার এর ১,০০০,০০০,০০০ (১০০ কোটি) ভাগের এক ভাগকে ন্যানোমিটার বলা হয়। ন্যানো শব্দটি গ্রিক nanos শব্দ থেকে এসেছে যার অভিধানিক অর্থ হল dwarft কিন্তু এটি মাপের একক হিসাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আর এই ন্যানোমিটার স্কেলে যে সমস্ত টেকনোলজি গুলি সর্ম্পকিত সেগুলিকেই বলে ন্যানোপ্রযুক্তি। মিটার এককটি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে জড়িত। বাড়িঘর আসবাবপত্র সবই আমরা মাপি এই মিটার এককে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের আগ পর্যন্ত মিলিমিটার স্কেলে যন্ত্রপাতির সূক্ষতা মাপা হত। মিলিমিটার এর ছোট কোন কিছু নিয়ে চিন্তা ভাবনার অবকাশ ছিলনা। কিন্তু দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হবার পরে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিতে এক নতুন যুগের সূচনা হল। সেমিকণ্ডাকটর তার পথযাত্রা শুরু করল। আর এর শুরুটা হল, ট্রানজিস্টর আবিষ্কার দিয়ে। তখন মাইক্রোমিটার একক দিয়ে আমাদের চিন্তভাবনা শুরু হল। বলা যায় যাত্রা শুরু হল, মাইক্রোটেকনোলজির। এর পরে টেকনোলজি এগুতে লাগলো প্রচন্ড গতিতে। নানা জিনিসপত্র, যার মধ্যে টেলিভিশন, রেডিও, ফ্রিজ ইত্যাদি ইত্যাদি। আর তা কীভাবে আরও ছোট করা যায় তা নিয়েই প্রচন্ত যুদ্ধ শুরু হয়ে গেল। কোন কম্পানি কত ছোট আকারের এই সমস্ত ভোগ্য জিনিস আমাদের কাছে পৌঁছাতে পারবে, তার প্রতিযোগিতা শুরু হল। আর এই সমস্ত ব্যাপারটা সম্ভব হল, সেমিকণ্ডাকটর সংক্রান্ত প্রযুক্তির কল্যাণে। প্রথম দিকের রেডিও কিংবা টিভির আকার দেখলে আমাদের এখন হাসি পাবে। এত বড় বড় জিনিস মানুষ ব্যবহার করত কীভাবে? সেই প্রশ্নটি হয়তো এসে দাড়াবে। কিন্তু এখন বাজারে দেয়ালে ঝুলাবার জন্য ক্যালেন্ডারের মত পাতলা টিভি এসেছে। সামনে হয়তো আরও ছোট আসবে। ১৯৮০ সনে IBM এর গবেষকরা প্রথম আবিষ্কার করেন STM(Scanning Tunneling Microscope) এই যন্ত্রটি দিয়ে অণুর গঠন পর্য়ন্ত দেখা সম্ভব। এই যন্ত্রটির আবিষ্কারই ন্যানোপ্রযুক্তিকে বাস্তবে রূপ দিতে সক্ষম হয়েছে। কীভাবে কাজ করে এই STM। এই যন্ত্রে খুব সূক্ষ পিনের মত সুচাল টিপ আছে এবং তা যখন কোন পরিবাহী বস্তুর খুব কাছে নিয়ে যাওয়া হয়, তখন তা থেকে টানেলিং নামে খুব অল্প পরিমাণে বিদ্যুৎ পরিবাহিত হয়। এবং এই বিদ্যুৎ এর পরিমাণ দিয়েই সেই বস্তুটির বাহিরের স্তরের অণুর চিত্র তৈরি করা হয়। তবে এই STM এর ক্ষেত্রে যা দেখতে চাইবো তাকে অবশ্যই বিদ্যুৎ পরিবাহী হতে হবে। কিন্তু বিদ্যুৎ অপরিবাহীর অণুর গঠন কীভাবে দেখা যাবে? না মানুষ বসে থাকেনি। অসম্ভবকে সম্ভব করেই মানুষ যেভাবে এতদূর এসেছে, তেমনি ভাবে এই অসম্ভবকে সম্ভব করা গেল AFM দিয়ে। STM এর ক্ষেত্রে টানেলিং বিদ্যুৎ দিয়ে কাজ করা হয় এবং AFM দিয়ে সূক্ষ্ম পিন দিয়ে অণুর গঠন দেখা সম্ভব। টপ টু ডাউন ও ডাউন টু টপ ন্যানোটেকনোলজির ক্ষেত্র দুটি প্রক্রিয়া আছ। একটি হল উপর থেকে নিচে (Top to Bottom)ও অপরটি হল নীচ থেকে উপর (Bottom to top)। টপডাউন পদ্ধতিতে কোন জিনিসকে কেটে ছোট করে তাকে নির্দিষ্ট আকার দেয়া হয়। এই ক্ষেত্র সাধারণত Etching প্রক্রিয়াটি সর্ম্পকিত। আর ডাউনটুটপ হল ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র আকারের ছোট জিনিস দিয়ে বড় কোন জিনিস তৈরি করা। আমাদেরর বর্তমান ইলেক্ট্রনিক্স হল, টপডাউন প্রযুক্তি। আর ন্যানোটেকনোলজির হল, বটমটপ প্রযুক্তি। ন্যানোমিটার স্কেলে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র বস্তুর উপাদান দিয়ে তৈরি করা হবে এই ন্যানোপ্রযুক্তিতে। সহজে বুঝবার জন্য একটা উদাহরণ দেয়া যাক। মনে করুন, আপনার একটা বিশেষ ধরনের DNA এর প্রয়োজন। সুতরাং বটমটপ প্রযুক্তিতে, সেই DNA এর ছোট ছোট উপাদান গুলিকে মিশ্রণ করে সেই কাঙ্ক্ষিত DNA টি তৈরি করা হবে। তবে নানোপ্রযুক্তিতে শুধু মাত্র বটমটুটপ প্রযুক্তিই নয়, বরং টপটুবটম প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই দুটির সংমিশ্রণ করা হবে। আমরা যারা কম্পিউটার ব্যবহার করছি তারা জানি যে, প্রতি বছরই কম্পিউটার এর মূল্য কমছে। প্রতিবছরই আগের তুলনায় সস্তায় আরও ভাল কার্যক্ষমতার কম্পিউটার পাওয়া যাচ্ছে। আসলে এই কম্পিউটার এর সাথেও ন্যানোটেকনোলজি সম্পর্কিত রয়েছে। কম্পিউটার এর ভিতর যে প্রসেসর আছে, আপনারা প্রায় সবাই ইন্টেল প্রসেসর এর নাম শুনে থাকবেন? এই প্রসেসর এর ভিতরে রয়েছে অসংখ্য ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ন্যানোমিটার স্কেলের সার্কিট। আর তাতে ব্যবহৃত হচ্ছে ন্যানোটেকনলজি। ইন্টের প্রসেসরে, সিলিকন এর উপর প্যাটার্ণ করে সার্কিট বানান হয় তার বর্তমান সাইজ হল ১০০ ন্যানোমিটার। সামনের তিন বছরে এর আকার হবে ৭০ ন্যানোমিটার। এবং সাতবছরে এর আকার হবে ৫০ ন্যানোমিটার। ইন্টেল আশা করছে যে ২০১০ সনে তারা ৩০ ন্যানোমিটার সাইজে নিয়ে আনতে পারবে। আর আজকের থেকে তখন এই প্রসেসর এর আকার অর্ধেক হয়ে আসবে। সেই দিনটা খুব বেশি দূরে নয় যেদিন আপনার মোবাইলটি কাজ করবে কম্পিউটারের মত। (বর্তমানেই এই ধরনের কিছু মোবাইল বাজারে এসেছে)। এছাড়া রয়েছে কম্পিউটারের হার্ডডিস্ক। এই হার্ডডিস্কের তথ্য সংরক্ষণের ক্ষমতা দিন দিন বড়ছে। এই হার্ডডিস্কেও ব্যবহৃত হচ্ছে ন্যানোটেকনলজি। এখন বাজারে ৪ টেরাবাইটের হার্ডডিস্ক পাওয়া যাচ্ছে। অথচ এই ব্যাপারটা আজ হতে ১০ বছর আগেও ছিল কল্পনার বাহিরে। স্থির বিদ্যুৎ ও তার কারসাজি ন্যানোটেকনলজি দিয়ে সার্কিট বানান যতটা সোজা বলে মনে করা হয়, ব্যাপারটা ততটা সোজা নয়। সেইখানে প্রধান যে বাধা এসে দাড়াবে তা হল, স্থির বিদ্যুৎ। শীতের দিনে বাহির থেক এসে দরজার নবে হাত দিয়েছেন? এমনি সময় হাতে শক লাগল কিংবা অন্ধকারে সুয়েটার খুলতে গেছেন এমনি সময় বিদ্যুৎ এর মত কণা সুয়েটারে দেখা গেল। এইগুলি সবই আমাদের প্রাত্যাহিক দিনে ঘটে, আর এইগুলিই হল স্থির বিদ্যুতের কারসাজি। সাধারণ ইলেক্ট্রিক সার্কিটের মধ্যে এই স্থির বিদ্যুৎ থেকে সার্কিটটিকে রক্ষা করার ব্যবস্থা থাকে। যদি তা না করা হত, তাহলে কোন একটা কারণে স্থির বিদ্যুৎ আপনার বৈদ্যুতিক সারঞ্জামকে নষ্ট করে দিত। কিন্তু ন্যানোটেকনলজির ক্ষেতে বৈদ্যুতিক সার্কিট কল্পনাতিত ছোট হয়ে যায় বলে গতানুগতিক পদ্ধতিতে রক্ষা করা সম্ভব নয়। কীভাবে ন্যানোস্কেলেও এই সার্কিটগুলিকে রক্ষা করা যায় তা নিয়ে বিজ্ঞানীরা গবেষণা করছেন। স্থির বিদ্যুৎ সার্কিটে কীরকম ক্ষতি করতে পারে? প্রকৃতপক্ষে ছোটসার্কিটে স্থিরবিদ্যুত প্রায় ১৫০০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড এর মত তাপ সৃষ্টি করে। এই তাপে সার্কিট এর উপকরণ গলে, সেই সার্কিটটিকে নষ্ট করে দিতে পারে। এই কারণে ১৯৯৭ এর পরে IC সার্কিটে গতানুগতিক ভাবে ব্যবহৃত এলুমিনিয়ামের পরিবর্তে তামা ব্যবহৃত হয়। কেননা তামার গলনাঙ্ক ১০৮৩ যেখানে এলুমিনিয়ামের গলনাঙ্ক ৬৬০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেড। ফলে অধিক তাপমাত্রাতেও তামা এ্যালুমিনিয়ামের তুলনায় ভাল কাজ করবে। ন্যানোপ্রযুক্তির ব্যবসায় ন্যানোটেকনলজির ভিত্তিতে অনেক অনেক নতুন নতুন টেকনলজির উদ্ভব হচ্ছে। নতুন নতুন দ্রব্য এর সূচনা করছে এবং সেই সাথে ব্যবসায়িক সুযোগের দ্বার উন্মোচন করছে। আশা করা হচ্ছে যে আমেরিকাতে ২০১০ সনের আগে ন্যানোটেকনলজি সম্পর্কিত পণ্যের বাজার ১ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌছবে এবং ৮ লক্ষ নতুন চাকরির সুযোগ করে দেবে। ন্যানোটেকনলজির গুরুত্বের কথা চিন্তা করে আমেরিকার সরকার বর্তমানে ন্যানোটেকনলজি সংক্রান্ত গবেষণাতে ২০০০ খ্রিষ্টাব্দে ৪২২ মিলিয়ন ডলার এবং ২০০৩ খ্রিষ্টাব্দে ৭১০ মিলিয়ন ডলার ব্যবহৃত হয়েছিল। শুধু সরকারই নয়, পাশাপাশি বিভিন্ন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও ন্যানোটেকনলজি গবেষণায় অর্থ সরবরাহ করছে। তার কারণ হল: ন্যানোটেকনলজি সম্ভাবনার এক নতুন দুয়ার উন্মোচন করতে যাচ্ছে। যদিও ন্যানোটেকনলজি খুব ক্ষুদ্র টেকনলজি সংক্রান্ত জিনিসগুলি নিয়ে কাজ করে যার ব্যাস একটি চুলের ব্যাসের ৮০ হাজার ভাগের এক ভাগ, কিন্তু এর ক্ষেত্র দিন দিন আরও বর্ধিত হচ্ছে। ১৯৯৬ সনের নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত রিচার্ড স্মলি বলেছেন, ন্যানোপ্রযুক্তি সম্পর্কিত বই The next big thing is really small by Jack Uldrich with Deb Newberry. Publisher: Crown Business, www.nanotec.org.uk তথ্যসূত্র আরও দেখুন ন্যানোপ্রযুক্তি পরিভাষা বহিঃসংযোগ What is Nanotechnology? (A Vega/BBC/OU Video Discussion). ১৯৮৫-এর নির্দেশনাবলি প্রযুক্তিবিদ্যা ১৯৬০-এ প্রবর্তন ১৯৮৫-এ প্রবর্তন উদীয়মান প্রযুক্তি
https://en.wikipedia.org/wiki/Nanotechnology
Nanotechnology
Nanotechnology is the manipulation of matter with at least one dimension sized from 1 to 100 nanometers (nm). At this scale, commonly known as the nanoscale, surface area and quantum mechanical effects become important in describing properties of matter. This definition of nanotechnology includes all types of research and technologies that deal with these special properties. It is common to see the plural form "nanotechnologies" as well as "nanoscale technologies" to refer to research and applications whose common trait is scale. An earlier understanding of nanotechnology referred to the particular technological goal of precisely manipulating atoms and molecules for fabricating macroscale products, now referred to as molecular nanotechnology. Nanotechnology defined by scale includes fields of science such as surface science, organic chemistry, molecular biology, semiconductor physics, energy storage, engineering, microfabrication, and molecular engineering. The associated research and applications range from extensions of conventional device physics to molecular self-assembly, from developing new materials with dimensions on the nanoscale to direct control of matter on the atomic scale. Nanotechnology may be able to create new materials and devices with diverse applications, such as in nanomedicine, nanoelectronics, biomaterials energy production, and consumer products. However, nanotechnology raises issues, including concerns about the toxicity and environmental impact of nanomaterials, and their potential effects on global economics, as well as various doomsday scenarios. These concerns have led to a debate among advocacy groups and governments on whether special regulation of nanotechnology is warranted.
1283
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A1%20%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%A8%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8
রিচার্ড ফাইনম্যান
রিচার্ড ফিলিপ্‌স ফাইনম্যান (১১ই মে, ১৯১৮ - ১৫ই ফেব্রুয়ারি, ১৯৮৮) একজন নোবেল বিজয়ী মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী, যিনি তার কোয়ান্টাম বলবিদ্যার পাথ ইন্টিগ্রাল ফর্মুলেশন, কোয়ান্টাম তড়িৎ-গতিবিজ্ঞান তত্ত্ব এবং অতিশীতলকৃত তরল হিলিয়ামের চরমপ্রবাহমানতা ক্রিয়াকৌশল ব্যাখ্যা করেছেন ও কণা পদার্থবিজ্ঞানে তার কাজের জন্য (তিনি পার্টন মডেল প্রস্তাব করেন।) খ্যাত। কোয়ান্টাম তড়িৎ-গতিবিজ্ঞানে তার অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ ১৯৬৫ সালে ফাইনম্যান মার্কিন বিজ্ঞানী জুলিয়ান শুইঙার এবং জাপানি বিজ্ঞানী সিন-ইতিরো তোমোনাগার সাথে যৌথভাবে পদার্থবিজ্ঞানে নোবেল পুরস্কার অর্জন করেন। ফাইনম্যান অতিপারমাণবিক কণাসমূহের আচরণ নিয়ন্ত্রণকারী গাণিতিক প্রকাশের বহুল ব্যবহৃত একটি চিত্ররূপ প্রদান করেন, যা ফাইনম্যান চিত্র নামে পরিচিত। জীবদ্দশায় এবং মৃত্যুর পরেও ফাইনম্যান পৃথিবীর অন্যতম জনপ্রিয় ও বিখ্যাত বিজ্ঞানী হিসেবে বিবেচিত। ফাইনম্যান ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি এবং প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেন। ১৯৪২ সালে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের পর অন্যান্য অনেক তরুণ পদার্থবিদের সাথে নিউ মেক্সিকোর লস আলামোসে পারমাণবিক বোমা তৈরিতে সাহায্য করেন। যুদ্ধশেষে প্রথমে তিনি কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে এবং পরবর্তীকালে ক্যালটেকে শিক্ষকতা করেন। তাকে কোয়ান্টাম গণনা এবং ন্যানোপ্রযুক্তির (আণবিক স্তরে যন্ত্রপাতি তৈরি) ধারণার জনক বলা হয়।. ফাইনম্যান তার বিভিন্ন বই ও লেকচারের মাধ্যমে পদার্থবিজ্ঞানকে জনপ্রিয় করার কাজ করেছেন, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ১৯৫৯ সালে ন্যানোপ্রযুক্তির ওপর প্রদত্ত ভাষণ দেয়ার্স প্লেনটি অফ রুম অ্যাট দা বটম, এবং দ্য ফাইনম্যান লেকচার্স অন ফিজিক্স। ফাইনম্যান তার আধা-আত্মজীবনীমূলক গ্রন্থ শিওরলি ইউ আর জোকিং, মি. ফাইনম্যান! এবং হোয়াট ডু ইউ কেয়ার হোয়াট আদার পিপল থিংক? ইত্যাদির জন্যেও খ্যাত। তিনি ছিলেন একজন প্রাঙ্কস্টার, জাগলার, সেফক্রাকার, শখের চিত্রশিল্পী ও বঙ্গোবাদক। তিনি ছিলেন মুক্ত চিন্তার অধিকারী একজন সুরসিক ব্যক্তি। পদার্থবিজ্ঞান ছাড়াও তার জীববিজ্ঞান, চিত্রকলা, মায়ান স্ক্রিপ্ট এবং সেফক্রাকিং-এ আগ্রহ ছিল। ফাইনম্যানের জীববিজ্ঞানে গভীর আগ্রহ ছিল; তার জিনবিজ্ঞানী ও অণুজীববিজ্ঞানী এস্থার লিডারবার্গের বন্ধুত্ব ছিল, যিনি রেপ্লিকা প্লেটিং ও ব্যাকটেরিওফায ল্যামডা আবিষ্কার করেছিলেন। তাদের বেশ কিছু বিজ্ঞানী সাথে সখ্যতা ছিল, যাঁরা নিউক্লিয়ার পদার্থবিজ্ঞানে ক্যারিয়ার শুরু করলেও নৈতিক কারণে জিনতত্ত্বে আগ্রহী হন—তাদের মধ্যে লিও জিলার্ড, গুইদো পনটেকরভো, এরন রোভিক এবং কার্ল সাগান উল্লেখযোগ্য। জীবনবৃত্তান্ত রিচার্ড ফিলিপ ফাইনম্যান ১১ মে, ১৯১৮ সালে নিউ ইয়র্কের ফার রকওয়ে, কুইনসে জন্মগ্রহণ করেন। তার পূর্বপুরুষরা রাশিয়া ও পোল্যান্ডের আদি অধিবাসী ছিলেন এবং তার পিতামাতা উভয়েই ছিলেন ইহুদি, তবে তারা গোঁড়া ছিলেন না। ফাইনম্যান (দুই বিখ্যাত পদার্থবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন ও এডওয়ার্ড টেলারের মতো) দেরিতে কথা বলা শুরু করেছিলেন; তিন বছর পূর্ণ হবার আগ পর্যন্ত তিনি একটি শব্দও উচ্চারণ করেননি। শৈশবে ফাইনম্যান তার বাবা মেলভিল ভীষণভাবে প্রভাবিত করেন, তিনিই তাকে প্রচলিত চিন্তা-ভাবনাকে চ্যালেঞ্জ করতে শিখিয়েছিলেন। আর মা লুসিলের কাছ থেকে ফাইনম্যান পেয়েছিলেন রসবোধ। ছোটোবেলা থেকেই তার বিজ্ঞানের প্রতি আগ্রহ ছিল; তিনি রেডিও মেরামত করে আনন্দ পেতেন এবং প্রকৌশলেও তার প্রতিভার কমতি ছিল না। তার বোন জোয়ানও একজন পেশাদার পদার্থবিজ্ঞানী ছিলেন। শিক্ষা ফাইনম্যান ছিলেন অত্যন্ত মেধাবী, তার আইকিউ ছিল ১২৫। কলেজে প্রবেশের আগেই তিনি ডিফারেন্সিয়াল ক্যালকুলাস ও ইন্টিগ্রাল ক্যালকুলাস জানতেন। গণিতে তার অপার আগ্রহ ছিল, তিনি জুনিয়র স্কুলের ছাত্র থাকাকালীন সময়ে স্কুলের গণিত দলের নিয়মিত সদস্য ছিলেন এবং নিত্য নতুন সমস্যা সমাধান করার কৌশল আবিষ্কার করা তার নেশার মত ছিল। এছাড়া গণিতে ব্যবহৃত বিভিন্ন প্রতীকের নিজস্ব রূপ উদ্ভাবন করাটাও তার শখ ছিল, তার আত্মজীবনীতে তিনি বলেছেন ত্রিকোণমিতির সাইন, কোসাইন এবং অন্যান্য অনেক প্রচলিত প্রতীকের নিজস্ব রূপ তিনি ব্যবহার করতেন। অবশ্য পরবর্তীকালে তিনি এ শখটি পরিত্যাগ করেন, কারণ অন্য মানুষজন তার প্রতীকের সাথে পরিচিত ছিল না। ফাইনম্যান ফার রকওয়ে হাই স্কুলের ছাত্র ছিলেন, যাতে নোবেল বিজয়ী বার্টন রিখটার ও বারুচ স্যামুয়েল ব্লুমবার্গ পড়েছিলেন। ফাইনম্যান তার হাই স্কুলে পড়াশোনার শেষ বছরে নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটি ম্যাথ চ্যাম্পিয়নশিপ জয় করেন; তার প্রাপ্ত নম্বরের সাথে নিকটতম প্রতিযোগীর নম্বরের ব্যবধান বিচারকদের বিস্মিত করেছিল। তিনি ম্যাসাচুসেটস ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি থেকে ১৯৩৯ সালে পদার্থবিজ্ঞানে স্নাতক অর্জন করেন এবং এরপর তিনি প্রিন্সটন ইউনিভার্সিটিতে পিএইচডি করতে যান। প্রিন্সটনে নির্বাচনী পরীক্ষায় তিনি গণিত ও পদার্থবিজ্ঞানে পারফেক্ট স্কোর করেন, যা ছিল একটি রেকর্ড - তবে ইতিহাস ও ইংরেজি ভাষা অংশে তিনি অতটা ভালো করতে পারেননি। তিনি ১৯৪২ সালে জন আর্কিবাল্ড হুইলারের অধীনে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেন। তার গবেষণার বিষয় ছিল প্রিন্সিপাল অফ স্টেশনারি একশান। কোয়ান্টাম বলবিদ্যার এই কাজই তার পাথ ইন্টিগ্রালের ভিত্তি ছিল, যার মাধ্যমে দ্য প্রিন্সিপাল অফ লিস্ট একশান ইন কোয়ান্টাম মেকানিকস গড়ে ওঠে। ম্যানহাটন প্রকল্প প্রিন্সটনে থাকাকালীন সময়ে পদার্থবিজ্ঞানী রবার্ট আর. উইলসন ফাইনম্যানকে ম্যানহাটন প্রকল্পে যোগদানের আমন্ত্রণ জানান— যা ছিল লস আলামসে যুদ্ধকালীন সময়ে মার্কিন সামরিক বাহিনীর পারমাণবিক বোমা তৈরির প্রকল্প। জার্মানিতে অ্যাটম বোমা তৈরির পূর্বেই কাজটি সম্পন্ন করার গুরূত্ব অনুধাবন করে ফাইনম্যান এর সাথে যুক্ত হন। তাকে হানস বেথের অধীনে তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী হিসাবে নিয়োগ দেয়া হয়, এবং বেথেকে চমৎকৃত করে তিনি একটি দলের নেতা নিযুক্ত হন। রবার্ট সার্বারের কাজের ওপর ভিত্তি করে ফাইনম্যান ও বেথে ফিশন বোমার বিধ্বংসী ফলাফল নির্ণয়ের জন্যে যৌথভাবে বেথে-ফাইনম্যান ফর্মুলা তৈরি করেন। ফাইনম্যান এই প্রকল্পে শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত কাজ করেছেন এবং ট্রিনিটি পরীক্ষামূলক বিস্ফোরণের সময়ও তিনি উপস্থিত ছিলেন। তার দাবী অনুযায়ী বিস্ফোরণ একমাত্র তিনিই খালি চোখে (সহায়ক কালো গ্লাস না লাগিয়ে) পর্যবেক্ষণ করেছিলেন। তিনি একটি ট্রাকের উইন্ডশিল্ডের মধ্য দিয়ে বিস্ফোরণ অবলোকন করেছিলেন, যার কাচ ক্ষতিকর অতিবেগুনী তেজষ্ক্রিয়তা শুঁষে নেবে বলে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন। তখনকার সময়ে কম্পিউটার ছিল না বলে ম্যানহাটন প্রজেক্টে মানব কম্পিউটার ব্যবহার করা হত, আর ফাইনম্যান গণনার তত্ত্বাবধান করতেন। এছাড়াও তার কাজের মধ্যে ছিল নিউক্লিয়ার রিঅ্যাকটর ডিজাইন করা। কাজটির নিশ্ছিদ্র গোপনীয়তার কারণে লস আলামস ছিল জনবিরল। ফাইনম্যানের ভাষায়, ওখানে করবার মতো কিছুই ছিল না, বসে থেকে থেকে বিরক্ত হয়ে ফাইনম্যান নানানরকম মজার পরীক্ষা-নিরীক্ষা শুরু করেন। ম্যানহাটন প্রকল্পে কর্মরত বিজ্ঞানীদের সব চিঠিপত্রই কর্তৃপক্ষের অনুমোদন লাভ করার পর (মানে প্রয়োজনীয় সম্পাদনার পর) প্রেরিত হত। ফাইনম্যান প্রায়ই তার সহকর্মীদের সাথে বাজি ধরতেন কোন কথাটা কাচির তলা পড়বে আর কোনটা পড়বে না তা নিয়ে। তিনি এ বিষয়ে একটা নিয়মও আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন। আবার একবার তিনি ল্যাবরেটরি আবেষ্টন করা কাঁটাতারের বেড়ায় একটি ফাঁক আবিষ্কার করলেন, যা কর্মচারীরা শর্টকাট হিসাবে ব্যবহার করতো। তিনি তা নিরাপত্তা কর্মীদের নজরে আনবার জন্যে বারবার গেট দিয়ে বের হয়ে বেড়ার ফাঁক দিয়ে ঢুকে আবার গেট দিয়ে বের হতে লাগলেন। এভাবে নিত্য নতুন ফন্দি আঁটা ফাইনম্যান কম্বিনেশন লক খোলার বিদ্যা শিখতে উঠে পড়ে লাগলেন। তিনি খেয়াল করেছিলেন বিজ্ঞানীরা ও কর্মকর্তারা পারমাণবিক বোমা সংক্রান্ত অতি গোপনীয় কাগজপত্র যেসব স্থানে তালাবন্ধ অবস্থায় রাখেন তা আদৌ নিরাপদ নয়। তিনি প্রায়ই এসব ক্যাবিনেট ও সেফের তালা খুলে সহকর্মীদের সাথে প্র্যাকটিকাল জোক করতেন। একসময় ব্যাপারটা তার নেশায় পরিণত হয় এবং তিনি সেফক্রাকিং এর ওপর রীতিমতো পড়াশোনা করে তালা খোলার বিদ্যা পারদর্শীতা অর্জন করেন। লস আলামসে কম্বিনেশন লকের নিরাপত্তা যাচাই করার জন্যে তার কাছে মতামত চাওয়া হতে শুরু করে। ফাইনম্যান কম্বিনেশন লকের কম্বিনেশন বের করার মজার এক বুদ্ধি বের করেছিলেন এবং এর মাধ্যমে তালা খুলে নানান হাস্যরসাত্মক ঘটনার জন্ম দিতেন। কর্মজীবনের সূচনাভাগ ১৯৪২ সালে ডক্টরেট করার পর ফাইনম্যান ইউনিভার্সিটি অফ উইসকনসিন-ম্যাডিসনে সহকারী অধ্যাপক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলেন। ম্যানহাটন প্রজেক্টে যোগদানের কারণে তার নিয়োগের পরপরই তিনি ছুটিতে চলে যান। ১৯৪৫ সালে তিনি ডিন মার্ক ইনগ্রাহামের কাছ থেকে একটি চিঠি পান, যাতে তাকে পরবর্তী শিক্ষাবর্ষে পাঠদানের জন্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দিতে অনুরোধ করা হয়। কিন্তু ফাইনম্যান এ বিষয়ে নিশ্চিত করে কিছু না বলায় তার নিয়োগ আর বর্ধিত করা হয়নি। পরবর্তীকালে ফাইনম্যান ইউডব্লুতে কয়েকটি বক্তৃতা দিয়েছিলেন, যেখানে তিনি মন্তব্য করেন, "এই বিশ্ববিদ্যালয়ে ফিরে আসতে পেরে খুবই ভালো লাগছে কারণ আমাকে চাকরিচ্যুত করার সুবুদ্ধি বিশ্ববিদ্যালয়ের আছে।যুদ্ধের পর ফাইনম্যান প্রিন্সটনের ইন্সটিটিউট অফ অ্যাডভান্স স্টাডির আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন, কিন্তু সেখানে আলবার্ট আইনস্টাইন, কুর্ট গোডেল, জন ভন নিউম্যান প্রমুখ বাঘা বিজ্ঞানীদের উপস্থিতি থাকা সত্ত্বেও তিনি সে আমন্ত্রণ প্রত্যাখান করে কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ে তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞান পড়ানোর চাকরি গ্রহণ করেন। ফাইনম্যান ১৯৪৫ থেকে ১৯৫০ পরযন্ত কর্নেলে পদার্থবিজ্ঞানে গাণিতিক পদ্ধতি প্রয়োগের পাঠদান করেন। হিরোশিমায় পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর তার গবেষণায় একটু ভাঁটার টান চলে, তবে তার পদার্থবিজ্ঞান নিয়ে আনন্দময় গবেষণা করার অভ্যাসটি তিনি শীঘ্রই ফিরে পান। একবার ক্যাফেটেরিয়ায় বসে এক কর্নেলের লোগো আঁকা প্লেট নিয়ে এক দড়াবাজিকরের খেলা দেখতে দেখতে তিনি প্লেট ও লোগোর ঘূর্ণনের সম্পর্কের একটি জটিল হিসাব নিকাশ সম্পন্ন করেন, যা পরবর্তীকালে তার নোবেল পুরস্কার পাওয়া কাজের ভিত্তি। ফাইনম্যান অসাধারণ ব্যাখ্যাদাতা হিসাবে সুপরিচিত ছিলেন। ছাত্রদের কোন কিছু সহজভাবে বোঝানোর ব্যাপারটি তিনি খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করতেন এবং পাঠ্য বিষয় ছাত্রদের হৃদয়ঙ্গম করাকে নিজের নৈতিক দায়িত্ব মনে করতেন। তিনি মনে করতেন একজন প্রথম বর্ষের ছাত্রকে যেকোন বিষয় বোঝানো সম্ভব, তা না করতে পারার মানে হল শিক্ষক নিজে বিষটি সম্পূর্ণরূপে অনুধাবন করতে পারেন নি। তার বিভিন্ন লেকচার এবং বক্তৃতায় এ নীতির ছাপ স্পষ্ট লক্ষ করা যায়। না বুঝে পদার্থবিজ্ঞান বা বিজ্ঞানের যে কোন বিষয় পড়াকে ফাইনম্যানের অর্থহীন মনে হত। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ে থাকার সময়েই লক্ষ্য করেছিলেন তার সহপাঠীরা যা শেখে তা অনেকটাই গ্রন্থগত; পরবর্তীকালে তিনি অনেক গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন ব্যক্তির মধ্যেও এমন সীমাবদ্ধতা লক্ষ্য করেন। কর্নেলে অধ্যাপনারত অবস্থায় ফাইনম্যান কিছুদিনের জন্যে পরিদর্শক অধ্যাপক হিসেবে ব্রাজিলে যান। সেখনে গিয়ে তিনি খেয়াল করেন সেখানকার বিজ্ঞান শিক্ষার দৈন্যদশা এবং পাঠ্যপুস্তকের দুর্বলতা। তিনি সে দেশের শিক্ষা সংক্রান্ত জাতীয় কনফারেন্সে অকুন্ঠচিত্তে এ বিষয়ে সমালোচনা করেন। তিনি যা ভালো মনে করতেন তা করতে তিনি কখনো দ্বিধাবোধ করতেন না। তিনি নির্বুদ্ধিতা বা ভান করা পছন্দ করতেন না এবং যারা তাকে বোকা বানাতে চাইত তাদের তিনি সহজে ছেড়ে দিতেন না। পুরস্কার ও সম্মাননা নোবেল পুরস্কার, (১৯৬৫) ন্যাশনাল মেডেল অব সায়েন্স, (১৯৭৯) উক্তিসমূহ ফাইনম্যানের উক্তি "প্রিয় মিসেস. চাউন, আপনাকে পদার্থবিজ্ঞান শেখানোর জন্য আপনার ছেলের প্রচেষ্টাকে আপনি খুব একটা আমলে নেবেন না। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় কিন্তু পদার্থবিজ্ঞান নয়। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভালোবাসা। শুভেচ্ছান্তে, রিচার্ড ফাইনম্যান।" "হস্তমৈথুনের কাছে যৌনসঙ্গম যেমন, গণিতের কাছে পদার্থবিজ্ঞান সেরকম।" "পদার্থবিজ্ঞান হলো যৌন-সঙ্গমের মতন: এটা কিছু বাস্তব ফল দিতেই পারে, কিন্তু সেজন্য আমরা এটা চর্চা করি না।" "গণিত বাস্তব নয়, তবে এটাকে বাস্তব বলে মনে হয়। তাহলে এটা আসলে কি?" "কোন সমস্যা সমাধান করার সময়টাতে দুশ্চিন্তা করো না। যখন সমাধান করা শেষ হলো তখনই আসলে দুশ্চিন্তা করার উপযুক্ত সময়।" "বিজ্ঞানের সবচেয়ে আকর্ষণীয় দিক হলো, এটি জীবন্ত।" "সব মৌলিক প্রক্রিয়াকেই উল্টোদিকে চালনা করা সম্ভব।" "কোন কিছু বোঝা-র অর্থ কি? ... আমি জানি না।" "যা আমি তৈরি করতে পারি না, তা আমি বুঝি না।" (মৃত্যুর পর তার চকবোর্ড থেকে নেয়া হয়েছে।) "যে সব সমস্যা সমাধান করা হয়েছে তাদের প্রতিটির সমাধান প্রক্রিয়া জানতে হবে।" (মৃত্যুর পর তার চকবোর্ড থেকে নেয়া হয়েছে।) "যারা গণিতে অজ্ঞ তাদের জন্য প্রকৃতির নিগূঢ়তম সৌন্দর্যকে সত্যকারভাবে উপলব্ধি করাটা কষ্টকর। ... প্রকৃতিকে জানতে হলে, তার সৌন্দর্যকে অনুধাবন করতে হলে প্রকৃতির ভাষা জানা চাই।" "সত্যিকার সমস্যাটা আমি সংজ্ঞায়িত করতে পারছি না, তাই আমার সন্দেহ হচ্ছে সত্যিকার কোন সমস্যা আদৌ আছে কি-না, কিন্তু কোন সত্যিকার সমস্যা যে নেই এটাও আমি নিশ্চিত করে বলতে পারছি না।" (কোয়ান্টাম বলবিদ্যা সম্পর্কে) "দুইবার মরতে হলে ব্যাপারটাকে আমি ঘৃণা করতাম। কারণ মৃত্যু খুবই একঘেয়ে ব্যাপার।" (শেষ উক্তি). ফাইনম্যানের সম্বন্ধে উক্তি ফাইনম্যানের সহকর্মী নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিদ মুরে জেল-ম্যান নিউ ইয়র্ক টাইমস-এ সরসভাবে বর্ণনা করেছেন যে, ফাইনম্যানের সমস্যা সমাধানের এলগরিদম''টি ছিল এরকমঃ সমস্যাটা লিখে ফেলুন; খুব করে ভাবুন; সমাধানটি লিখে ফেলুন। নোবেল পুরস্কার বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী ও গণিতবিদ ই. পি. উইগনার ফাইনম্যান সম্পর্কে বলেছেন, "তিনি হলেন দ্বিতীয় ডিরাক। পার্থক্য শুধু, এবারের জন একজন মানুষ।" নোবেল পুরস্কার বিজয়ী তত্ত্বীয় পদার্থবিজ্ঞানী হান্স বিদে বলেছেন, "দুই রকমের জিনিয়াস আছেন। সাধারণ জিনিয়াসেরা মহান সব কাজ করে থাকেন, কিন্তু সবসময়েই এটা চিন্তা করার সুযোগ থেকে যায় যে, যথেষ্ট পরিমাণে খাটলে আপনিও বুঝি ওটা করতে পারতেন। আরেকরকমের জিনিয়াস অনেকটা যাদুকরের মতন, আপনি কিছুতেই ভেবে উঠতে পারবেন না, তারা সেটা কীভাবে করল। ফাইনম্যান ছিলেন একজন যাদুকরী জিনিয়াস। " তথ্যসূত্র পাদটীকা . . . . , foreword by Timothy Ferris. (Published in the UK under the title: Don't You Have Time to Think?, with additional commentary by Michelle Feynman, Allen Lane, 2005, .) . . . . . . . . গ্রন্থপঞ্জি Physics Today, American Institute of Physics magazine, February 1989 Issue. (Vol.42, No.2.) Special Feynman memorial issue containing non-technical articles on Feynman's life and work in physics. Most of the Good Stuff: Memories of Richard Feynman, edited by Laurie M. Brown and John S. Rigden, NY: Simon and Schuster, 1993, . Commentary by Joan Feynman, John Wheeler, Hans Bethe, Julian Schwinger, Murray Gell-Mann, Daniel Hillis, David Goodstein, Freeman Dyson, Laurie Brown. Disturbing the Universe, Freeman Dyson, Harper and Row, 1979, . Dyson’s autobiography. The chapters “A Scientific Apprenticeship” and “A Ride to Albuquerque” describe his impressions of Feynman in the period 1947-48 when Dyson was a graduate student at Cornell. QED and the Men Who Made It: Dyson, Feynman, Schwinger, and Tomonaga (Princeton Series in Physics), Silvan S. Schweber, Princeton University Press, 1994, . Feynman's Rainbow: A Search For Beauty In Physics And In Life, by Leonard Mlodinow, Warner Books, 2003, Published in the United Kingdom as Some Time With Feynman. The Feynman Processor: Quantum Entanglement and the Computing Revolution, Gerard J. Milburn, Perseus Books, 1998 Genius: The Life and Science of Richard Feynman, James Gleick, Pantheon, 1992, The Beat of a Different Drum: The Life and Science of Richard Feynman, Jagdish Mehra, Oxford University Press, 1994, No Ordinary Genius: The Illustrated Richard Feynman, edited by Christopher Sykes, W W Norton & Co Inc, 1994, . Richard Feynman: A Life in Science, John Gribbin and Mary Gribbin, Dutton Adult, 1997, Infinity, a movie directed by Matthew Broderick and starring Matthew Broderick as Feynman, depicting Feynman's love affair with his first wife and ending with the Trinity test. 1996. "Clever Dick", Crispin Whittell, Oberon Books, 2006 (play) "QED", Peter Parnell (play). "The Pleasure of Finding Things Out" A film documentary autobiography of Richard Feynman, Nobel laureate and theoretical physicist extraordinary. 1982, BBC TV 'Horizon' and PBS 'Nova' (50 mins film). See Christopher Sykes Productions https://web.archive.org/web/20131101082658/http://www.sykes.easynet.co.uk/ "The Quest for Tannu Tuva", with Richard Feynman and Ralph Leighton. 1987, BBC TV 'Horizon' and PBS 'Nova' (under the title "Last Journey of a Genius") (50 mins film) "No Ordinary Genius" A two-part documentary about Feynman's life and work, with contributions from colleagues, friends and family. 1993, BBC TV 'Horizon' and PBS 'Nova' (a one-hour version, under the title "The Best Mind Since Einstein") (2 x 50 mins films) বহিঃসংযোগ Guide to the Papers of Richard Phillips Feynman, 1933-1988 Feynman at The Caltech Institute Archives Biography and Bibliographic Resources, from the Office of Scientific and Technical Information, United States Department of Energy The Feynman Lectures Website About Richard Feynman Feynman's Scientific Publications A Biography of R. P. Feynman as a mathematician Gallery of Drawings by Richard P. Feynman The Pleasure of Finding Things Out: A 49-minute BBC Horizon TV programme from the 1980s in which Feynman reminisces about his life and work. Edge-video: Murray Gell-mann reminisces about Feynman's personal eccentricities Feynman on the rules of chess Feynman lecture Feynman on the nature of physics Feynman talks about confusion Feynman's BBC interview on uncertainty Feynman on disrespect of authority ১৯১৮-এ জন্ম ১৯৮৮-এ মৃত্যু মার্কিন পদার্থবিজ্ঞানী মার্কিন নোবেল বিজয়ী নোবেল বিজয়ী পদার্থবিজ্ঞানী ম্যানহাটন প্রকল্পের ব্যক্তিত্ব ইহুদি নাস্তিক ইহুদি মার্কিন বিজ্ঞানী পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানী তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী কোয়ান্টাম পদার্থবিজ্ঞানী কণা পদার্থবিজ্ঞানী প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী কর্নেল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ন্যাশনাল মেডেল অফ সাইন্স বিজয়ী আলবার্ট আইনস্টাইন পুরস্কার বিজয়ী ২০শ শতাব্দীর মার্কিন পদার্থবিদ ২০শ শতাব্দীর নাস্তিক ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির শিক্ষক মার্কিন নাস্তিক বেলারুশীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি পোলীয় ইহুদি বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি মার্কিন সংশয়বাদী মার্কিন পাঠ্যপুস্তক লেখক ক্যালিফোর্নিয়ায় ক্যান্সারে মৃত্যু আমেরিকান ফিজিক্যাল সোসাইটির বিশিষ্ট সভ্য রয়েল সোসাইটির বিদেশি সদস্য কোয়ান্টাম কম্পিউটিং রিচার্ড ফাইনম্যান ক্যালিফোর্নিয়ার বিজ্ঞানী নিউ ইয়র্ক (অঙ্গরাজ্য)-এর বিজ্ঞানী ম্যাসাচুসেটস ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি স্কুল অফ সায়েন্সের প্রাক্তন শিক্ষার্থী
https://en.wikipedia.org/wiki/Richard_Feynman
Richard Feynman
Richard Phillips Feynman (; May 11, 1918 – February 15, 1988) was an American theoretical physicist, known for his work in the path integral formulation of quantum mechanics, the theory of quantum electrodynamics, the physics of the superfluidity of supercooled liquid helium, as well as his work in particle physics for which he proposed the parton model. For his contributions to the development of quantum electrodynamics, Feynman received the Nobel Prize in Physics in 1965 jointly with Julian Schwinger and Shin'ichirō Tomonaga. Feynman developed a widely used pictorial representation scheme for the mathematical expressions describing the behavior of subatomic particles, which later became known as Feynman diagrams. During his lifetime, Feynman became one of the best-known scientists in the world. In a 1999 poll of 130 leading physicists worldwide by the British journal Physics World, he was ranked the seventh-greatest physicist of all time. He assisted in the development of the atomic bomb during World War II and became known to the wider public in the 1980s as a member of the Rogers Commission, the panel that investigated the Space Shuttle Challenger disaster. Along with his work in theoretical physics, Feynman has been credited with pioneering the field of quantum computing and introducing the concept of nanotechnology. He held the Richard C. Tolman professorship in theoretical physics at the California Institute of Technology. Feynman was a keen popularizer of physics through both books and lectures, including a 1959 talk on top-down nanotechnology called There's Plenty of Room at the Bottom and the three-volume publication of his undergraduate lectures, The Feynman Lectures on Physics. Feynman also became known through his autobiographical books Surely You're Joking, Mr. Feynman! and What Do You Care What Other People Think?, and books written about him such as Tuva or Bust! by Ralph Leighton and the biography Genius: The Life and Science of Richard Feynman by James Gleick.
1284
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%A8
বেবুন
বেবুন বানর জাতীয় একটি স্তন্যপায়ী প্রাণী। তথ্য স্তন্যপায়ী প্রাণী আফ্রিকার প্রাণিকুল
https://en.wikipedia.org/wiki/Baboon
Baboon
Baboons are primates comprising the genus Papio, one of the 23 genera of Old World monkeys, in the family Cercopithecidae. There are six species of baboon: the hamadryas baboon, the Guinea baboon, the olive baboon, the yellow baboon, the Kinda baboon and the chacma baboon. Each species is native to one of six areas of Africa and the hamadryas baboon is also native to part of the Arabian Peninsula. Baboons are among the largest non-hominoid primates and have existed for at least two million years. Baboons vary in size and weight depending on the species. The smallest, the Kinda baboon, is 50 cm (20 in) in length and weighs only 14 kg (31 lb), while the largest, the chacma baboon, is up to 120 cm (47 in) in length and weighs 40 kg (88 lb). All baboons have long, dog-like muzzles, heavy, powerful jaws with sharp canine teeth, close-set eyes, thick fur except on their muzzles, short tails, and nerveless, hairless pads of skin on their protruding buttocks called ischial callosities that provide for sitting comfort. Male hamadryas baboons have large white manes. Baboons exhibit sexual dimorphism in size, colour and/or canine teeth development. Baboons are diurnal and terrestrial, but sleep in trees, or on high cliffs or rocks at night, away from predators. They are found in open savannas and woodlands across Africa. They are omnivorous and their diet consists of a variety of plants and animals. Their principal predators are Nile crocodiles, leopards, lions and hyenas. Most baboons live in hierarchical troops containing harems. Baboons can determine from vocal exchanges what the dominance relations are between individuals. In general, each male can mate with any female; the mating order among the males depends partly on their social rank. Females typically give birth after a six-month gestation, usually to one infant. The females tend to be the primary caretaker of the young, although several females may share the duties for all of their offspring. Offspring are weaned after about a year. They reach sexual maturity around five to eight years. Males leave their birth group, usually before they reach sexual maturity, whereas most females stay in the same group for their lives. Baboons in captivity live up to 45 years, while in the wild they average between 20 and 30 years.
1285
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%8B%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%96
ইয়োহান জেবাস্টিয়ান বাখ
ইয়োহান জেবাস্টিয়ান বাখ () (২১শে মার্চ, ১৬৮৫ পু. প. – ২৮শে জুলাই, ১৭৫০ ন. প.) একজন জার্মান সুরকার ও অর্গানবাদক। তার কাজের পরিমাণ বিপুল। কয়ার, অর্কেস্ট্রা ও একক বাদনের জন্য লেখা তার ধর্মীয় ও ধর্মনিরপেক্ষ সঙ্গীতকর্ম বারোক পর্বের বিভিন্ন সাঙ্গীতিক ধারাকে একত্রিত করে ও পূর্ণতা প্রদান করে। বাখ কোন নতুন ধরনের সঙ্গীত উদ্ভাবন করেননি। তবে তিনি কাউন্টারপয়েন্ট, ছোট থেকে বড় স্কেলে সুনিয়ন্ত্রিত প্রগমন, ইতালি ও ফ্রান্সের সঙ্গীত থেকে ঋণ করা ছন্দ ও টেক্সচারের প্রয়োগ, ইত্যাদি কৌশল ব্যবহার করে তার সমকালীন জার্মান সঙ্গীতকে ঋদ্ধ করেন। তিনি সর্বকালের অন্যতম সেরা সুরকার হিসেবে খ্যাত। জীবিত অবস্থায় একজন দক্ষ অর্গানবাদক হিসেবে প্রচুর খ্যাতি লাভ করলেও সুরকার হিসেবে বাখ তেমন পরিচিতি পান নি। বাখের সমসাময়িক অন্যান্য সুরকাররা বারোক ঘরানার গঠন ও "কনট্র্যাপচুয়াল" ধরনের সঙ্গীতের প্রতি তার অণুরাগকে সেকেলে মনে করতেন‌- বিশেষ করে তার সঙ্গীতজীবনের শেষের দিকে, যখন মূলধারার সঙ্গীত ক্রমশ "রকোকো", ও আরও পরবর্তীকালে ধ্রুপদী, রূপ গ্রহণ করতে থাকে। বাখের সঙ্গীত সম্পর্কে সঙ্গীতজ্ঞদের সত্যিকারের আগ্রহ দেখা যায় ১৯শ শতকের প্রথম দিকে; অন্যদের হাতে তার সঙ্গীতের চর্চাও শুরু হয় এ সময়েই। বাখের সঙ্গীতকর্ম চিন্তার গভীরতা, কৌশলগত দক্ষতা ও শৈল্পিক সৌন্দর্যের জন্য বিখ্যাত। নিচে Weihnachtsoratorium থেকে নেয়া কোরাস Ehre sei Gott in der Höhe শুনুন। এটি বাখ ১৭৩৪-এ রচনা করেন। জীবনী শৈশব সাংক্‌ত গেয়র্গেস গির্জার অর্গানবাদক ইয়োহান আমব্রোসেউস বাখ এবং মারিয়া এলিজাবেটা বাখের সবচেয়ে ছোট ছেলে ইয়োহান জেবাস্টিয়ান বাখ জার্মানির টুরিঙেন প্রদেশের আইজেনাখ শহরে জন্মগ্রহণ করেন। বাবার হাতেই বেহালা এবং হারপসিকর্ড বাদনে বাখের হাতেখড়ি হয়। বাখের চাচারা সবাই ছিলেন পেশাদার সঙ্গীতবিদ; চার্চের অর্গানবাদক, রাজসভার বাজিয়ে, সুরকার হিসেবে নানা জায়গায় কর্মরত ছিলেন তারা। এই চাচাদের মধ্যে বিশেষ খ্যাতিমান একজন, ইয়োহান ক্রিস্টফ বাখ (১৬৪৫‌-১৬৯৩), অর্গানের সাথে জেবাস্টিয়ান বাখের পরিচয় করান। সঙ্গীত বিষয়ে নিজের পরিবারের অর্জন নিয়ে বেশ গর্ব ছিলো বাখের, যার বহিঃপ্রকাশ ১৭৩৫ সালে তার নিজের হাতে করা "বাখ সঙ্গীত পরিবারের উৎস" নামক বংশপঞ্জিকার খসড়া। বাখের মা ১৬৬৪ সালে মারা যান,এবং তার বাবা এর ৮ মাস পরেই মারা যান।১০ বছর বয়সের এতিম এই শিশু তার ভাইদের মধ্যে সবার বড় johann christopher bach(1671-1721) যিনি ছিলেন Michaeliskirche (Ohrdruf, Sachsen-Gotha-Altenburg এ অবস্থিত) এর একজন অর্গানবাদক।ঐ সময় তিনি তার ভাইয়ের কাছ থেকে সঙ্গীত সম্বন্ধে মূল্যবান জ্ঞান লাভ করেন এবংcalvichord বাজানো শেখেন। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ J.S. Bach Home Page, by Jan Hanford—extensive information on Bach and his works; database of recordings and user reviews J.S. Bach bibliography , by Yo Tomita of Queen's University Belfast—especially useful to scholars Bach-Cantatas.com, by Aryeh Oron—information on the cantatas as well as other works Bach manuscripts – video lectures by Christoph Wolff on the Bach family's hidden manuscripts archive ১৬৮৫-এ জন্ম ১৭৫০-এ মৃত্যু জার্মান সুরকার পুরুষ পিয়ানোবাদক জার্মান লুথারান
https://en.wikipedia.org/wiki/Johann_Sebastian_Bach
Johann Sebastian Bach
Johann Sebastian Bach (31 March [O.S. 21 March] 1685 – 28 July 1750) was a German composer and musician of the late Baroque period. He is known for his prolific authorship of music across a variety of instruments and forms, including orchestral music such as the Brandenburg Concertos; solo instrumental works such as the cello suites and sonatas and partitas for solo violin; keyboard works such as the Goldberg Variations and The Well-Tempered Clavier; organ works such as the Schubler Chorales and the Toccata and Fugue in D minor; and choral works such as the St Matthew Passion and the Mass in B minor. Since the 19th century Bach Revival, he has been generally regarded as one of the greatest composers in the history of Western music. The Bach family already counted several composers when Johann Sebastian was born as the last child of a city musician, Johann Ambrosius, in Eisenach. After being orphaned at the age of 10, he lived for five years with his eldest brother Johann Christoph, after which he continued his musical education in Lüneburg. From 1703 he was back in Thuringia, working as a musician for Protestant churches in Arnstadt and Mühlhausen and, for longer periods, at courts in Weimar, where he expanded his organ repertory, and Köthen, where he was mostly engaged with chamber music. From 1723, he was employed as Thomaskantor (cantor at St Thomas's) in Leipzig. There, he composed music for the principal Lutheran churches of the city and its university's student ensemble Collegium Musicum. From 1726, he published some of his keyboard and organ music. In Leipzig, as had happened during some of his earlier positions, he had difficult relations with his employer. This situation was little remedied when his sovereign, Augustus III of Poland, granted him the title of court composer in 1736. In the last decades of his life, he reworked and extended many of his earlier compositions. He died of complications after a botched eye surgery in 1750 at the age of 65. Bach enriched established German styles through his mastery of counterpoint, harmonic, and motivic organisation, and his adaptation of rhythms, forms, and textures from abroad, particularly from Italy and France. Bach's compositions include hundreds of cantatas, both sacred and secular. He composed Latin church music, Passions, oratorios, and motets. He often adopted Lutheran hymns, not only in his larger vocal works but, for instance, also in his four-part chorales and his sacred songs. He wrote extensively for organ and for other keyboard instruments. He composed concertos, for instance for violin and for harpsichord, and suites, as chamber music as well as for orchestra. Many of his works employ contrapuntal techniques like canon and fugue. Throughout the 18th century, Bach was primarily valued as an organist, while his keyboard music, such as The Well-Tempered Clavier, was appreciated for its didactic qualities. The 19th century saw the publication of some significant Bach biographies, and by the end of that century, all of his known music had been printed. Dissemination of scholarship on the composer continued through periodicals (and later also websites) exclusively devoted to him and other publications such as the Bach-Werke-Verzeichnis (BWV, a numbered catalogue of his works) and new critical editions of his compositions. His music was further popularised through a multitude of arrangements, including the Air on the G String and "Jesu, Joy of Man's Desiring", and of recordings, such as three different box sets with complete performances of the composer's oeuvre marking the 250th anniversary of his death.
1287
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AF%20%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9F%E0%A6%B2%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%B8
দ্য বিটল্‌স
দ্য বিটল্‌স (ইংরেজি: The Beatles) ছিল ইংল্যান্ডের লিভারপুলের একটি রক সঙ্গীত গ্রুপ। এর চার সদস্য ছিলেন জন লেনন, পল ম্যাকার্টনি, জর্জ হ্যারিসন এবং রিঙ্গো স্টার। বিটল্‌স জনপ্রিয় ধারার সঙ্গীতের ইতিহাসে সমালোচক ও শ্রোতা উভয় দিক থেকেই শীর্ষস্থানীয় সঙ্গীত দল ছিল। ১৯৬০ এর দশকের মধ্যভাগে বিটল্‌স অভূতপূর্ব জনপ্রিয়তা লাভ করে। ১৯৬৯ এ বিটল্‌স ভেঙ্গে যায়, কিন্তু তা সত্ত্বেও সারা পৃথিবীতে বিটল্‌স এখন পর্যন্ত জনপ্রিয়। প্রথম যুগের রক এন্ড রোল এবং পপ সঙ্গীতে তাদের প্রভাবের জন্য তাদের শিল্পসম্মত অর্জন ও বাণিজ্যিক সফলতা একটি মর্যাদাপূর্ণ আসনে আসীন হয়ে আছে। যদিও তাদের প্রাথমিক সাঙ্গীতিক ধরন ১৯৫০-এর রক এ্যান্ড রোল এর মূলে প্রোথিত ছিল, তারপরও বিভিন্ন সাঙ্গীতিক ধরন, যেমন, লোক সঙ্গীত, রকাবেলী সাইকেডেলিক এবং ভারতীয় সঙ্গীতের বিভিন্নতাকে ধারণ করেছিল বিটল্‌স। বিটল্‌স্ এর প্রভাব সঙ্গীতের বাহিরেও ব্যাপ্ত ছিল। তাদের পোশাক-আশাক, কেশবিন্যাস, বক্তব্য, এমনকি তাদের পছন্দের সঙ্গীত যন্ত্রসমূহের প্রভাব ১৯৬০ দশকজুড়ে তাদেরকে দৃষ্টান্ত সৃষ্টিকারী হিসেবে তৈরি করে ফেলেছিল। আজ পর্যন্ত বিটল্‌স অন্য যেকোন ব্যান্ড দলের চেয়ে বেশি অ্যালবাম বিক্রি করেছে। যুক্তরাজ্যে তাদের ৪০টি বিভিন্ন অ্যালবাম বেরিয়েছিল যা সর্বোচ্চ জনপ্রিয়তা পেয়েছিল। এই বাণিজ্যিক সফলতার পুনরাবৃত্তি হয়েছিল অন্যান্য অনেক দেশেই। ই.এম.আই. এর অনুমান অনুযায়ী ১৯৮৫ এর মধ্যে বিটল্‌স্ এর এক বিলিয়নের উপর ডিস্ক ও টেপ বিক্রি হয়েছিল। আমেরিকাতেও একক গান এবং অ্যালবাম বিক্রির ক্ষেত্রে বিটল্‌স ছিল সর্বকালের সেরা শিল্পী দল। ২০০৪ সালে রোলিং স্টোন ম্যাগাজিন বিটল্‌সকে সর্বকালের সেরা ১০০ শ্রেষ্ঠ শিল্পীর তালিকার শীর্ষে স্থান দেয়। ইতিহাস ১৯৫৭–৬২: গঠন, হামবুর্গ এবং যুক্তরাজ্য জনপ্রিয়তা ১৯৫৭ সালের মার্চে লিভারপুলের কুয়েরি ব্যাংক গ্রামার স্কুলে পড়াকালীন সময়ে জন লেনন দ্য কোয়ারিমেন নামে একটি দল গঠন করেন। ১৯৫৭ সালের ৬ জুলাই সেইন্ট পিটার্স চার্চের উল্টন গার্ডেনে লেননের সাথে পল ম্যাককার্টনির সাক্ষাৎ হয় এবং এর কিছুদিন পর লেনন তাকে ব্যান্ডে যোগ দেবার আমন্ত্রণ জানান। ১৯৫৮ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি তরুণ গিটারিস্ট জর্জ হ্যারিসনকে লিভারপুলের উইন্সটন হলে দলটির শো দেখতে আমন্ত্রণ জানানো হয়। ম্যাককার্টনি ও হ্যারিসন ছিলেন একই এলাকার বাসিন্দা। লিভারপুল ইনস্টিটিউট থেকে ফেরার সময় তারা পরিচিত হন এবং ম্যাককার্টনির অনুরোধে জর্জ হ্যারিসন লিড গিটারিস্ট হিসেবে দ্য কোয়ারিমেন দলে যোগ দেন। লেনন শুরুতে কম বয়স্ক হবার কারণে হ্যারিসনকে নিতে না চাইলেও ১৯৫৮ সালের মার্চে দলের সাথে মহড়ার পর তিনি সন্তুষ্ট হন। সে সময় নিয়মিত সদস্য যোগ দিয়েছেন আবার বেরিয়েও গেছেন। ১৯৬০ সালের জানুয়ারিতে লেননের ক্লেজ জীবনের বন্ধু স্টুয়ার্ট সাটক্লিফ বেজ গিটারিস্ট হিসেবে যোগ দেন। লেনন ও ম্যাককার্টনি উভয়েই রিদম গিটার বাজাতেন। দলে ড্রামারের সঙ্কট ছিল। পরে ১৯৬২ সালে রিঙ্গো স্টার দলটিতে যোগ দান করেন। রিঙ্গোকে সঙ্গে নিয়ে দলটি তাদের নিজস্ব একক গানগুলো বিভিন্ন কনসার্টে পরিবেশন করতে থাকে। ম্যাককার্টনি ও লেনন ম্যাককার্টনি/লেনন গান লেখায় জুটি গড়ে তোলেন। ইতোমধ্যেই তারা বেশ সাফল্য অর্জন করতে সক্ষম হন। নামকরণ কোয়ারিমেন ব্যান্ডের নাম বেশ কয়েকবার পরিবর্তন করা হয়— "জনি অ্যান্ড দ্য মুনডগস", "লং জন অ্যান্ড দ্য বিটল্‌স", "দ্য সিলভার বিটল্‌স", এবং শেষ পর্যন্ত ১৯৬০ সালের আগস্ট মাসে "দ্য বিটল্‌স" নামটি স্বীকৃতি পায়। ব্যান্ডের নাম ও নামের বানান নিয়ে বেশ কয়েকটি মতবাদ প্রচলিত রয়েছে। তবে সাধারণত লেননকেই নামকরনের কৃতিত্ব দেয়া হয়, যিনি বলেছিলেন নামটি বিটল (beetle) পোকা (বাডি হলির দ্য ক্রিকেটস নামে ব্যান্ড ছিল) ও বিট (beat) এর মিলনে তৈরি করা হয়েছে। সিনথিয়া লেননের মতে বিটল্‌স নামটি রর্যাাভেনশ হল বারের বিয়ার-পূর্ণ টেবিলে মাথা খাটিয়ে তৈরি করা হয়েছে। লেনন যিনি একই ঘটনার বিভিন্ন কাহিনী বলার জন্য বিখ্যাত, ১৯৬১ সালে মার্সি বিট ম্যাগাজিনকে বলেন, স্বপ্নে একটি মানুষ জলন্ত পাই নিয়ে তাদের কাছে আসে এবং বলে যে আজকে থেকে তারা এ বানানের বিটল্‌স। ২০০১ সালে এক সাক্ষাৎকারে পল ম্যাককার্টনি নামের বিদঘুটের বানানের কৃতিত্ব নিজের বলে দাবি করেন। তিনি বলেন, জন বিটল্‌স (beetles) নামের প্রস্তাব করেছিল, তখন আমি বলি বিটল্‌স (beatles) হলে কেমন হয়? কারণ আমি ড্রামের বিট পছন্দ করি। তখন সবাই এটি বেশ পছন্দ করে। আন্তর্জাতিক খ্যাতি ১৯৬৩ সালের ২২ মার্চ দ্য বিটল্‌স এর প্রথম স্টুডিও অ্যালবাম প্লিজ প্লিজ মি মুক্তি পায়। ১৯৬২ সালের জনপ্রিয় একক গানগুলোর পাশাপাশি নতুন কিছু গানসহ মোট ১৪টি গান এ অ্যালবামে স্থান পায়। এ অ্যালবামটি ইংল্যান্ডের সঙ্গীতের শীর্ষতালিকায় প্রথম স্থান দখল করে। ফলে দলটি বিপুল জনপ্রিয়তা অর্জন করে। তারা নিজেদের একটি লোগোও তৈরি করে ফেলে। দ্য বিটল্‌স এর দ্বিতীয় স্টুডিও অ্যালবাম উইদ দ্য বিটল্‌স মুক্তি পায় ২২ নভেম্বর ১৯৬৩ সালে। এ অ্যালবামটির রেকর্ডিং চলেছে একই বছরের ১৮ জুলাই থেকে ২৩ অক্টোবর পর্যন্ত। এতে জর্জ হ্যারিসনের প্রথম কম্পোজিশান করা গানটি রয়েছে। ১৯৬৪ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে দলটি ইংল্যান্ড ত্যাগ করে আন্তর্জাতিক পরিসরে কনসার্ট করার জন্য। তারা যুক্তরাষ্ট্রের এক টিভি অনুষ্ঠানে সঙ্গীত পরিবেশন করে । ৭৩ লক্ষ দর্শক— সে দেশের ৪০% মানুষ এ অনুষ্ঠান দেখেন। এর ফলে তাদের আন্তর্জাতিক খ্যাতি আরও বেড়ে যায়। জন লেনন পরিচিত ছিলেন সুদর্শন বিটল হিসেবে, পল ম্যাককার্টনি মিষ্টি বিটল, জর্জ হ্যারিসন শান্ত বিটল, ও রিঙ্গো স্টার রসাত্নক বিটল হিসেবে পরিচিত ছিলেন। এ হার্ড ডে’স নাইট ১৯৬৪ সালে মুক্তি পায়। এতে ব্যান্ডটি তাদের রক অ্যান্ড রোল ধারা অব্যাহত রাখে। এটি প্রকৃতপক্ষে বিটল্‌সের সদস্যদের অভিনীত কয়েকদিন আগের মুক্তি পাওয়া একই শিরোনামের একটি হাস্যরসাত্নক চলচিত্রের গানের অ্যালবাম। চলচিত্রটি আন্তর্জাতিক ভাবে প্রচন্ড জনপ্রিয় হয়। এ গানের অ্যালবামের রেকর্ডিং-এ জর্জ হ্যারিসন ব্যবহার করেন ১২ তারের রিকেনবেকার গীটারটি। একই বছরের একেবারে শেষভাগে, বড়দিনের আগে বিটল্‌স ফর সেল মুক্তি পায়। তারা সর্বমোট ১২ টি স্টুডিও অ্যালবাম প্রকাশ করে। তাদের সর্বশেষ অ্যালবাম 'লেট ইট বি' ১৯৭০ সালের মে মাসে মুক্তি পায়। ১৯৬০ দশক পুরটুকুই দ্য বিটল্‌স বিশ্ব সঙ্গীতজগতে রাজত্ব করেছে। ভাঙ্গন দ্য বিটল্‌স-এর ভাঙ্গনের পেছনে একাধিক কারণ ছিল। মূলত ব্যক্তিগত মতের অমিলের রেশ ধরেই ১৯৬৮ সাল থেকে তাদের দলে ভাঙ্গনের সূত্রপাত হয়। ১৯৭০ সালে 'দ্য বিটল্‌স-এর আনুষ্ঠানিক ভাঙ্গন হয়। ভাঙ্গনের পর চার বিটল ব্যক্তিগত সঙ্গীত ক্যারিয়ারে প্রবেশ করেন। ১৯৮০ সালে জন লেনন-এর মৃত্যর পর ১৯৯৪ সালে বাকি তিন বিটল একত্রিত হয়েছিলেন। ডিস্কোগ্রাফি মূল ক্যাটালগ প্লিজ প্লিজ মি (১৯৬৩) উইথ দ্য বিটল্‌স (১৯৬৩) এ হার্ড ডে'স নাইট (১৯৬৪) বিটল্‌স ফর সেল (১৯৬৪) হেল্প! (১৯৬৫) রাবার সোল (১৯৬৫) রিভলভার (১৯৬৬) সার্জেন্ট পেপার'স লোনলি হার্টস ক্লাব ব্যান্ড (১৯৬৭) ম্যাজিকাল মিস্টেরি ট্যুর (১৯৬৭) দ্য বিটল্‌স (হোয়াইট অ্যালবাম) (১৯৬৮) ইয়েলো সাবমেরিন (১৯৬৯) অ্যাবি রোড (১৯৬৯) লেট ইট বি (১৯৭০) টীকা উদ্ধৃতি উৎস আরও পড়ুন বহিঃসংযোগ FBI file on The Beatles Hugo Keesing Collection on the Beatles - মেরিল্যান্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের শিল্পকলা সঞ্চালনার বিশেষ সংগ্রহ দ্য বিটল্‌স রোলিং স্টোন এ দ্য বিটল্‌সের ইন্টার্ভিউ ডেটাবেস দ্য বিটল্‌স - টাইমলাইন হামবুর্গে দ্য বিটল্‌স হওয়াট গোজ অন দ্য বিটল্‌সের খবর ১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত সংগীত দল অ্যাপল কর্পস অ্যাপল রেকর্ডস শিল্পী পার্লোফোনের শিল্পী ক্যাপিটল রেকর্ডসের শিল্পী ভি-জে রেকর্ডস শিল্পী সোয়ান রেকর্ডস শিল্পীদের বিট গোষ্ঠী অ্যাকাডেমি পুরস্কার বিজয়ী ব্রিট পুরস্কার বিজয়ী ইংরেজি পপ সংগীত দল ইংরেজি রক সংগীত দল গ্র্যামি পুরস্কার বিজয়ী বিশ্ব সঙ্গীত পুরস্কার বিজয়ী রিঙ্গো স্টার যুক্তরাজ্যের ব্যান্ড ব্রিটিশ আগ্রাসনের শিল্পী গ্র্যামি আজীবন সম্মাননা পুরস্কার প্রাপক অ্যাটকো রেকর্ডসের শিল্পী প্রোটো-প্রোগ সঙ্গীতজ্ঞ ইংরেজ সাইকেডেলিক রক সঙ্গীত দল ১৯৬০-এ ইংল্যান্ডে প্রতিষ্ঠিত ইংরেজ রক সঙ্গীত দল সাঙ্গীতিক কুয়োটেট সাইকেডেলিক পপ সঙ্গীত দল বিশ্বরেকর্ডধারী
https://en.wikipedia.org/wiki/The_Beatles
The Beatles
The Beatles were an English rock band formed in Liverpool in 1960. The core lineup of the band comprised John Lennon, Paul McCartney, George Harrison and Ringo Starr. They are widely regarded as the most influential band of all time and were integral to the development of 1960s counterculture and the recognition of popular music as an art form. Rooted in skiffle, beat and 1950s rock 'n' roll, their sound incorporated elements of classical music and traditional pop in innovative ways. The band also explored music styles ranging from folk and Indian music to psychedelia and hard rock. As pioneers in recording, songwriting and artistic presentation, the Beatles revolutionized many aspects of the music industry and were often publicized as leaders of the era's youth and sociocultural movements. Led by primary songwriters Lennon and McCartney, the Beatles evolved from Lennon's previous group, the Quarrymen, and built their reputation by playing clubs in Liverpool and Hamburg, Germany, over three years from 1960, initially with Stuart Sutcliffe playing bass. The core trio of Lennon, McCartney and Harrison, together since 1958, went through a succession of drummers, including Pete Best, before inviting Starr to join them in 1962. Manager Brian Epstein moulded them into a professional act, and producer George Martin guided and developed their recordings, greatly expanding their domestic success after they signed with EMI Records and achieved their first hit, "Love Me Do", in late 1962. As their popularity grew into the intense fan frenzy dubbed "Beatlemania", the band acquired the nickname "the Fab Four". Epstein, Martin or other members of the band's entourage were sometimes informally referred to as a "fifth Beatle". By early 1964, the Beatles were international stars and had achieved unprecedented levels of critical and commercial success. They became a leading force in Britain's cultural resurgence, ushering in the British Invasion of the United States pop market. They soon made their film debut with A Hard Day's Night (1964). A growing desire to refine their studio efforts, coupled with the challenging nature of their concert tours, led to the band's retirement from live performances in 1966. During this time, they produced albums of greater sophistication, including Rubber Soul (1965), Revolver (1966) and Sgt. Pepper's Lonely Hearts Club Band (1967). They enjoyed further commercial success with The Beatles (also known as "the White Album", 1968) and Abbey Road (1969). The success of these records heralded the album era, as albums became the dominant form of record use over singles. These records also increased public interest in psychedelic drugs and Eastern spirituality and furthered advancements in electronic music, album art and music videos. In 1968, they founded Apple Corps, a multi-armed multimedia corporation that continues to oversee projects related to the band's legacy. After the group's break-up in 1970, all principal former members enjoyed success as solo artists, and some partial reunions occurred. Lennon was murdered in 1980, and Harrison died of lung cancer in 2001. McCartney and Starr remain musically active. The Beatles are the best-selling music act of all time, with estimated sales of 600 million units worldwide. They are the most successful act in the history of the US Billboard charts, holding the record for most number-one albums on the UK Albums Chart (15), most number-one hits on the US Billboard Hot 100 chart (20), and most singles sold in the UK (21.9 million). The band received many accolades, including seven Grammy Awards, four Brit Awards, an Academy Award (for Best Original Song Score for the 1970 documentary film Let It Be) and fifteen Ivor Novello Awards. They were inducted into the Rock and Roll Hall of Fame in their first year of eligibility, 1988, and each principal member was individually inducted between 1994 and 2015. In 2004 and 2011, the group topped Rolling Stone's lists of the greatest artists in history. Time magazine named them among the 20th century's 100 most important people.
1288
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B2%E0%A7%81%E0%A6%A1%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%97%20%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%9F%E0%A6%B9%E0%A7%8B%E0%A6%AB%E0%A7%87%E0%A6%A8
লুডভিগ ফান বেটহোফেন
লুডভিগ ফান বেটহোফেন(; ১৭ ডিসেম্বর ১৭৭০ – ২৬ মার্চ ১৮২৭) একজন জার্মান সুরকার এবং পিয়ানো বাদক। তাকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ সুরকারদের একজন মনে করা হয়। তিনি পাশ্চাত্য সঙ্গীতের ধ্রুপদী ও রোমান্টিক যুগের অন্তর্বর্তীকালীন সময়ের প্রভাবশালী ব্যক্তিত্ব। তাঁর খ্যাতি ও প্রতিভা পরবর্তী প্রজন্মের সুরকার, সঙ্গীতজ্ঞ ও শ্রোতাদের অনুপ্রাণিত করেছে। জীবন বেটহোফেনের জন্ম জার্মানির বন শহরে। তরুণ বয়সে তিনি সেখান থেকে অস্ট্রিয়ার ভিয়েনায় চলে আসেন ও সেখানেই বাকি জীবন কাটান। এখানে তিনি ইওসেফ হাইডেনের অধীনে দীক্ষা নেন এবং শিঘ্রই অসামান্যকৌশলী পিয়ানোবাদক হিসেবে খ্যাতিলাভ করেন। বয়স ত্রিশ ছোঁয়ার আগেই তিনি ধীরে ধীরে তাঁর শ্রবণশক্তি হারাতে থাকেন, কিন্তু এই ব্যক্তিগত বিপর্যয়ের মাঝেও তিনি বিশ্বকে বহুদিন ধরে অসাধারণ সব “মাস্টারপিস” উপহার দিয়ে যান। বেইটোভেন ছিলেন প্রথম “ফ্রি-ল্যান্স” সুরকারদের একজন — তিনি ভাড়ায় কনসার্ট পরিচালনা করতেন, তাঁর সুর প্রকাশকদের কাছে বিক্রি করতেন ও কিছু সহৃদয় ধনীর কাছ থেকে ভাতা পেতেন — গির্জা বা কোন রাজকীয় সভায় স্থায়ী চাকরি করা তাঁর স্বভাবে ছিল না। টীকা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Beethoven-Haus Bonn , official website The Ira F. Brilliant Center for Beethoven Studies, The Beethoven Gateway (San José State University) ১৭৭০-এ জন্ম ১৮২৭-এ মৃত্যু জার্মান সুরকার আলোকিত যুগ পুরুষ পিয়ানোবাদক‎ রোমান ক্যাথলিক জার্মান রোমান ক্যাথলিক পিয়ানোর সুর কম্পোজার রোমান্টিক সুরকার অসম্পূর্ণ জীবনী নিবন্ধ পুরুষ অপেরা সুরকার জাতীয় সঙ্গীত রচয়িতা
https://en.wikipedia.org/wiki/Ludwig_van_Beethoven
Ludwig van Beethoven
Ludwig van Beethoven (baptised 17 December 1770 – 26 March 1827) was a German composer and pianist. He is one of the most revered figures in the history of Western music; his works rank among the most performed of the classical music repertoire and span the transition from the Classical period to the Romantic era in classical music. His early period, during which he forged his craft, is typically considered to have lasted until 1802. From 1802 to around 1812, his middle period showed an individual development from the styles of Joseph Haydn and Wolfgang Amadeus Mozart, and is sometimes characterized as heroic. During this time, Beethoven began to grow increasingly deaf. In his late period, from 1812 to 1827, he extended his innovations in musical form and expression. Born in Bonn, Beethoven displayed his musical talent at a young age. He was initially taught intensively by his father, Johann van Beethoven, and later by Christian Gottlob Neefe. Under Neefe's tutelage in 1783, he published his first work, a set of keyboard variations. He found relief from a dysfunctional home life with the family of Helene von Breuning, whose children he loved, befriended, and taught piano. At age 21, he moved to Vienna, which subsequently became his base, and studied composition with Haydn. Beethoven then gained a reputation as a virtuoso pianist, and was soon patronised by Karl Alois, Prince Lichnowsky for compositions, which resulted in his three Opus 1 piano trios (the earliest works to which he accorded an opus number) in 1795. His first major orchestral work, the First Symphony, premiered in 1800, and his first set of string quartets was published in 1801. Despite his advancing deafness during this period, he continued to conduct, premiering his Third and Fifth Symphonies in 1804 and 1808, respectively. His Violin Concerto appeared in 1806. His last piano concerto (No. 5, Op. 73, known as the Emperor), dedicated to his frequent patron Archduke Rudolf of Austria, premiered in 1811, without Beethoven as soloist. He was almost completely deaf by 1815, and he then gave up performing and appearing in public. He described his problems with health and his unfulfilled personal life in two letters, his Heiligenstadt Testament (1802) to his brothers and his unsent love letter to an unknown "Immortal Beloved" (1812). After 1810, increasingly less socially involved as his hearing loss worsened, Beethoven composed many of his most admired works, including later symphonies, mature chamber music and the late piano sonatas. His only opera, Fidelio, first performed in 1805, was revised to its final version in 1814. He composed Missa solemnis between 1819 and 1823 and his final Symphony, No. 9, the first major example of a choral symphony, between 1822 and 1824. Written in his last years, his late string quartets, including the Grosse Fuge, of 1825–1826 are among his final achievements. After several months of illness, which left him bedridden, he died on 26 March 1827 at the age of 56.
1289
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B2
বাইবেল
বাইবেল বা ধর্মপুস্তক (; , tà biblía, “পুস্তকসমূহ”) একটি ধর্মগ্রন্থ সংকলন যা খ্রীষ্টান, যিহূদী, শমরীয়, রাস্তাফারি ও অন্যান্যদের নিকট পবিত্র। এটি বিভিন্ন ধরনের পুস্তকের সংকলন (anthology) যা এই বিশ্বাসের দ্বারা সংযুক্ত যে তারা সম্মিলিতভাবে ঈশ্বরের দৈববাণী। এই পুস্তকগুলির মধ্যে রয়েছে ধর্মতাত্ত্বিক দৃষ্টিনিবদ্ধ, ঐতিহাসিক বিবরণ, স্তব, প্রার্থনা, প্রবাদ-প্রবচন, নীতিগর্ভ রূপক কাহিনী, পত্র, আদিরসাত্মক গল্প, কাব্য ও ভাববাণী। বিশ্বাসীরা সাধারণত বাইবেলকে ঐশ্বরিক অনুপ্রেরণার একটি সৃষ্টিকর্ম হিসাবে বিবেচনা করে। একটি ঐতিহ্য বা গোষ্ঠী দ্বারা বাইবেলে অন্তর্ভুক্ত সেই পুস্তকগুলিকে ধর্মসম্মত বলা হয়, যা সূচিত করে যে সেই ঐতিহ্য বা গোষ্ঠীটি সংকলনটিকে সদাপ্রভুর বাক্য এবং ইচ্ছার প্রকৃত উপস্থাপনা হিসাবে দেখে। বাইবেলের প্রচুর ধর্মপুস্তক মণ্ডলী থেকে মণ্ডলীতে অধিক্রমণ ও অপসৃত বিষয়বস্তুর মাধ্যমে বিবর্তিত হয়েছে। হিব্রু বাইবেল বা তানাখ গ্রীক সপ্ততি ও খ্রীষ্টান পুরাতন নিয়মের সাথে সমাপতিত হয়। খ্রীষ্টান নূতন নিয়ম হল প্রথম শতাব্দীর কোইনি গ্রীক ভাষায় প্রাথমিক খ্রীষ্টানদের, যাদের নাসরতীয় যীশুর যিহূদী শিষ্য বলে ধারণা করা হয়, দ্বারা রচিত গ্রন্থের সংকলন। খ্রীষ্টান মণ্ডলীগুলির মধ্যে ধর্মপুস্তকে কী অন্তর্ভুক্ত করা উচিত সে সম্পর্কে কিছুটা দ্বিমত রয়েছে, মূলত বাইবেলের অপ্রামাণিক অংশসমূহ, একটি রচনা তালিকা যা বিভিন্ন মাত্রার শ্রদ্ধার সাথে বিবেচিত হয়। বাইবেলের প্রতি মনোভাবের ক্ষেত্রেও খ্রীষ্টীয় দলগুলির মধ্যেও ভিন্নতা পরিলক্ষিত হয়। রোমীয় কাথোলিক, উচ্চমণ্ডলী ইঙ্গবাদী, পদ্ধতিবাদী ও পূর্বদেশীয় অর্থোডক্স খ্রীষ্টানরা বাইবেল ও পবিত্র ঐতিহ্য উভয়ের সঙ্গতি আর গুরুত্বের উপর জোর দেয়, আবার অনেক প্রতিবাদী মণ্ডলী সোলা স্ক্রিপতুরা ধারণার উপর বা কেবল ধর্মগ্রন্থের উপর গুরুত্ব আরোপ করে। সংস্কারকালে এই ধারণাটি প্রসিদ্ধি লাভ করেছিল এবং বর্তমানে অনেক মণ্ডলী খ্রীষ্টীয় শিক্ষার একমাত্র অভ্রান্ত উৎস হিসাবে বাইবেলের ব্যবহারকে সমর্থন করে। অন্যরা যদিও অনেক জ্ঞানী খ্রিস্টান ব্যক্তিবর্গ বাইবেলে প্রচুর ইতিহাস ও বিজ্ঞান বিষয়ক ভুল-ক্রুটির থাকার দাবী জানান। সাহিত্য এবং ইতিহাসে বাইবেলের ব্যাপক প্রভাব পড়েছে, বিশেষত পশ্চিমা বিশ্বে, যেখানে গুটেনবার্গ বাইবেল প্রথম সচল মুদ্রাক্ষর ব্যবহার করে ছাপা হয়েছিল। টাইম ম্যাগাজিনের মার্চ ২০০৭ সংস্করণ অনুসারে, “বাইবেল রচিত গ্রন্থসমূহের মধ্যে সাহিত্য, ইতিহাস, বিনোদন এবং সংস্কৃতি গঠনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা পালন করেছে। বিশ্ব ইতিহাসে এর প্রভাব অতুলনীয় এবং এর প্রভাব হ্রাসের কোনো লক্ষণ দৃশ্যমান নয়।” আনুমানিক মোট ৫ বিলিয়নের অধিক কপি বিক্রীত। ২০০০ এর দশক হিসাবে বার্ষিক এটির প্রায় ১০০ মিলিয়ন কপি বিক্রি হয়। বাইবেল খ্রিস্ট ধর্মাবলম্বীদের প্রধান ধর্মগ্রন্থ। বাইবেল শব্দটি উদ্ভূত হয়েছে কয়িন গ্রীক τὰ βιβλία, tà biblía, "বইগুলো" থেকে; বাইবেল অর্থাৎ ধর্ম শাস্ত্র, লিপি বা পুস্তক, ঈশ্বরের বাক্য। প্রচলিত প্রোটেস্ট্যান্ট বাইবেল ৬৬টি পুস্তকের একটি সংকলন, যা দুটি প্রধান পর্বে বিভক্ত — ৩৯টি পুস্তক সংবলিত পুরাতন নিয়ম বা ওল্ড টেস্টামেন্ট এবং ২৭টি পুস্তক সংবলিত নতুন নিয়ম বা নিউ টেস্টামেন্ট। তবে ক্যাথলিক বাইবেলে পুস্তকসংখ্যা প্রোটেস্ট্যান্টদের চেয়ে ৭টি বেশি, অর্থাৎ ৭৩টি। খ্রিস্টধর্ম মতে ১৬০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ৪০জন লেখক বাইবেল লিপিবদ্ধ করেছিলেন এবং বাইবেলের মুখ্য বিষয়বস্তু বা কেন্দ্রমণি হলেন যীশু। পুরাতন নিয়ম মূলত হিব্রু ভাষায় লিখিত, তবে দানিয়েল ও ইষ্রা পুস্তক দুটির কিছু অংশ আরামীয় ভাষায় লিখিত। নতুন নিয়ম গ্রিক ভাষায় রচিত। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষ এই বাইবেল লিপিবদ্ধ করেছেন বলা হয়। অনেক খ্রিস্টান বিশ্বাস করেন, এই বাইবেল লিপিবদ্ধ হয়েছিল খ্রিস্টীয় ত্রিত্ববাদের অন্যতম পবিত্র আত্মার সহায়তায়। পৃথিবীর অনেক ভাষায় বাইবেল অনুদিত হয়েছে। ঐতিহাসিক ঘটনার বিবরণের ক্ষেত্রে বাইবেল ও কুরআন-এর ভাষ্য কিছুু ক্ষেত্রে অভিন্ন। তবে বাইবেলে কুরআনের বিপরীত কথাও পাওয়া যায়। বাইবেলের একাধিক ভিন্ন ভিন্ন সংস্করণ সমূহ আছে। ইংরেজী ভাষাতে আপনি পেতে পারেন যেমন দি কিং জেমস সংস্করণ, দি নিউ ইন্টারন্যাশনাল সংস্করণ, দি নিউ  আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড সংস্করণ, দি নিউ ইংলিশ সংস্করণ এবং ইত্যাদি। যেহেতু বাইবেলের অনেক বিভিন্ন সংস্করণ আছে সেহেতু এটি দেখায় যে বাইবেল (আল কিতাব) বিকৃত হয়েছে, বা কমপক্ষে ‘সত্য’ একটিকে জানি না। হ্যাঁ বাস্তবিকই এই বিভিন্ন সংস্করণগুলো আছে – কিন্তু এর সাথে বাইবেলের বিকৃতির কোনো সম্পর্ক নেই বা এইগুলো সত্যই ভিন্ন ভিন্ন বাইবেল কি না। প্রকৃতপক্ষে সেখানে কেবলমাত্র একটি বাইবেল/কিতাব আছে। উদাহরণস্বরূপ, যখন দি নিউ ইন্টারন্যাশনাল সংস্করণের কথা বলি, তখন মূল গ্রীক (ইঞ্জিল) এবং হিব্রু (তৌরাত এবং যাবুর) থেকে ইংরেজিতে এক নির্দিষ্ট অনুবাদের কথা বলছি I দি নিউ আমেরিকান স্ট্যান্ডার্ড ইংরেজির আর একটি অনুবাদ কিন্তু সেই একই গ্রীক এবং হিব্রু পাঠ্য থেকে। ব্যুৎপত্তি বিকাশলাভ ও ইতিহাস বিষয়বস্তু পুরাতন নিয়ম পুরাতন নিয়মে ৩৯টি (প্রোটেস্টান্ট), ৪৬টি (কাথোলিক) বা তার বেশি (অর্থোডক্স ও অন্যান্য) বই রয়েছে যেগুলো খুব বিস্তৃতভাবে, পঞ্চপুস্তক, ঐতিহাসিক পুস্তক, প্রজ্ঞাপুস্তক এবং নবীগণের পুস্তকে বিভক্ত। খালি ছকঘর নির্দেশ করে যে ওই পুস্তকটি সেই কানুনে অনুপস্থিত। পূর্বদেশীয় অর্থোডক্স কানুনের বেশ কিছু বই লাতিন ভুলগাতা বা প্রাকৃত বাইবেলের পরিশিষ্টেও পাওয়া যায়, যা পূর্বে রোমীয় কাথোলিক মণ্ডলীর দাপ্তরিক বাইবেল ছিল। নূতন নিয়ম নূতন নিয়মের কানুনসমূহ {| class="wikitable sortable sticky-header" |- ! style="width:124px;"| বই ! style="width:123px; text-align:center;"| প্রতিবাদী ও পুনরুদ্ধারবাদী ঐতিহ্য ! style="width:123px;"| রোমীয় কাথোলিক ঐতিহ্য ! style="width:123px;"| পূর্বদেশীয় অর্থোডক্স ঐতিহ্য ! style="width:123px;"| আর্মেনীয় প্রেরিতীয় ঐতিহ্য ! style="width:123px;"| কপ্টীয় অর্থোডক্স ঐতিহ্য ! style="width:123px;"| অর্থোডক্স তেওয়াহেদো ঐতিহ্য ! style="width:123px;"| সুরীয় ঐতিহ্য |- | colspan="8" style="text-align:center;"| ধর্মসম্মত সুসমাচার |- | মথি || || || || || || || |- | মার্ক|| || || || || || || |- | লূক || || || || || || || |- | যোহন|| || || || || || || |- | colspan="8" style="text-align:center;"| প্রেরিতীয় ইতিহাস |- | প্রেরিত || || || || || || || |- | পৌল ও থেক্লার কার্যবিবরণী|| || || || style="background:#FFA6C9; text-align:center;"| না(আদি ঐতিহ্য) || || || style="background:#FFA6C9; text-align:center;"| না(আদি ঐতিহ্য) |- | colspan="8" style="text-align:center;"|কাথোলিক পত্রসমূহ |- | যাকোব || style="background:#1CAC78; text-align:center;"| হ্যাঁ || || || || || || |- | ১ পিতর || || || || || || || |- | ২ পিতর || || || || || || || style="background:#1CAC78; text-align:center;"| হ্যাঁ |- | ১ যোহন || || || || || || || |- | ২ যোহন || || || || || || || style="background:#1CAC78; text-align:center;"| হ্যাঁ |- | ৩ যোহন || || || || || || || style="background:#1CAC78; text-align:center;"| হ্যাঁ |- | যিহূদা || style="background:#1CAC78; text-align:center;"| হ্যাঁ || || || || || || style="background:#1CAC78; text-align:center;"| হ্যাঁ |- | colspan="8" style="text-align:center;"|পৌলীয় পত্রসমূহ |- | রোমীয় || || || || || || || |- | ১ করিন্থীয় || || || || || || || |- | ২ করিন্থীয় || || || || || || || |- | ৩ করিন্থীয়|| || || || style="background:#fc9; text-align:center;"| না − কিছু পাণ্ডুলিপির অন্তর্ভুক্ত || || || style="background:#FFA6C9; text-align:center;"| না(আদি ঐতিহ্য) |- | গালাতীয় || || || || || || || |- | ইফিষীয় || || || || || || || |- | ফিলিপীয় || || || || || || || |- | কলসীয় || || || || || || || |- | লায়দিকীয় || style="background:#FFA6C9; text-align:center;"| না − কিছু সংস্করণে অন্তর্ভুক্ত|| style="background:#fc9; text-align:center;" | না − কিছু পাণ্ডুলিপিতে অন্তর্ভুক্ত || || || || || |- | ১ থিষলনীকীয় || || || || || || || |- | ২ থিষলনীকীয় || || || || || || || |- | ইব্রীয় || style="background:#1CAC78; text-align:center;"| হ্যাঁ|| || || || || || |- | ১ তীমথিয় || || || || || || || |- | ২ তীমথিয় || || || || || || || |- | তীত || || || || || || || |- | ফিলীমন || || || || || || || |- | colspan="8" style="text-align:center;"| স্বর্গীয় রহস্য উন্মোচন |- | প্রকাশিত বাক্য || style="background:#1CAC78; text-align:center;"| হ্যাঁ || || || || || || style="background:#1CAC78; text-align:center;"| হ্যাঁ |- | colspan="8" style="text-align:center;"| প্রেরিতীয় পিতাগণ ও আদি মণ্ডলীয় রীতি |- | ১ ক্লেমেন্ত|| colspan="7" style="background:#FFA6C9; text-align:center;" | না(আলেক্সান্দ্রীয় ও হিয়েরোসলিমিতানীয় পুঁথি) |- | ২ ক্লেমেন্ত || colspan="7" style="background:#FFA6C9; text-align:center;"| না(আলেক্সান্দ্রীয় ও হিয়েরোসলিমিতানীয় পুঁথি) |- | হের্মার মেষপালক || colspan="7" style="background:#FFA6C9; text-align:center;"| না(সীনয়তিক পুঁথি) |- | বার্ণবার পত্র || colspan="7" style="background:#FFA6C9; text-align:center;"| না(হিয়েরোসলিমিতানীয় ও সীনয়তিক পুঁথি) |- | দিদাখে || colspan="7" style="background:#FFA6C9; text-align:center;"| না(হিয়েরোসলিমিতানীয় পুঁথি) |- | সের`আতা সেয়োন(সিনোদ) || || || || || || style="background:#40E0D0; text-align:center;"| হ্যাঁ(বৃহত্তর কানুন) || |- | তে'এজাজ(সিনোদস) || || || || || || style="background:#40E0D0; text-align:center;"| হ্যাঁ(বৃহত্তর কানুন) || |- | গেস্সেও(সিনোদস) || || || || || || style="background:#40E0D0; text-align:center;"| হ্যাঁ(বৃহত্তর কানুন) || |- | অবতেল(সিনোদস) || || || || || || style="background:#40E0D0; text-align:center;"| হ্যাঁ(বৃহত্তর কানুন) || |- | নিয়ম ১(মাশাফা কিদান) || || || || || || style="background:#40E0D0; text-align:center;"| হ্যাঁ(বৃহত্তর কানুন) || |- | নিয়ম ২(মাশাফা কিদান) || || || || || || style="background:#40E0D0; text-align:center;"| হ্যাঁ(বৃহত্তর কানুন) || |- | ইথিয়পীয় ক্লেমেন্ত (কালেমেন্তস)|| || || || || || style="background:#40E0D0; text-align:center;"| হ্যাঁ(বৃহত্তর কানুন) || |- | ইথিয়পীয় দিদেস্কালিয়া(দিদেস্কেল্যা) || || || || || || style="background:#40E0D0; text-align:center;"| হ্যাঁ(বৃহত্তর কানুন) || |} সারণী পাদটীকা পাঠ্য ইতিহাস প্রভাব ব্যাখ্যা ও অনুপ্রেরণা সংস্করণ ও তর্জমা প্রত্নতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক গবেষণা বাইবেলীয় সমালোচনা বাইবেল জাদুঘর দরদালান চিত্রালঙ্কার বিভিন্ন ধর্মের দৃষ্টিকোণ ইহুদি ধর্ম আব্রাহামীয় ধর্মের মধ্যে ইহুদি ধর্ম, খ্রিস্টধর্মের বাইবেলকে স্বীকার করে না, যেমনটা স্বীকার করে না 'যীশু' নামক ঈশ্বরের কোনো বাণীবাহককে। তবে খ্রিস্টানগণ যেখানে বাইবেলের পুরাতন নিয়ম বলতে ইহুদি ধর্মের ধর্মগ্রন্থগুলোকে বুঝিয়ে থাকেন, সেখানে ইহুদি ধর্মে এজাতীয় কোনো বিভাজন দেখা যায় না, বরং খ্রিস্টধর্মমতে পুরাতন নিয়মই ইহুদি ধর্মের ঐশ্বিক ধর্মগ্রন্থ তোরাহ''। ইসলাম ধর্ম ইসলাম ধর্মে পবিত্র কুরআন ও হাদিস শরিফে "বাইবেল" বলে কোনো ধর্মগ্রন্থের উল্লেখ পাওয়া যায় না। উল্লেখ পাওয়া যায়, আল্লাহর বার্তাবাহক নবি ঈসা (আ.) এর উপর অবতীর্ণ "ইঞ্জিল" নামক ধর্মগ্রন্থের। কুরআনে বলা হয়েছে, খ্রিস্টানদের যীশুকেই পবিত্র কুরআনে ঈসা (আ.) বলা হয়েছে। তবে মুসলিমদের মতে খ্রিস্টান ধর্মযাজকরা আল্লাহর কিতাব "ইঞ্জিল" পরিবর্তন ও বিকৃত করেছে। তাই বর্তমান বাইবেলকে তারা আল্লাহর কিতাব হিসেবে মানে না, বরং আল্লাহর কিতাবের পরিবর্তিত ও বিকৃত রূপ বলে। বাইবেলের বিষয়ে মুসলিমরা ইযহারুল হক সহ বিভিন্ন বই লিখেছে। আরও দেখুন পুরাতন নিয়ম নতুন নিয়ম বাইবেল লেখক বাইবেল সমালোচনা মিসকোটিং জিসাস: দ্য স্টোরি বিহাইন্ড হু চেঞ্জড দ্য বাইবেল এন্ড হোয়াই পাদটীকা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ অনলাইনে বাংলা বাইবেল বাইবেল খ্রিস্টান ও ইহুদি ধর্ম ইহুদি-খ্রিস্টীয় বিষয়বস্তু
https://en.wikipedia.org/wiki/Bible
Bible
The Bible (from Koine Greek τὰ βιβλία, tà biblía, 'the books') is a collection of religious texts or scriptures, some, all, or a variant of which are held to be sacred in Christianity, Judaism, Samaritanism, Islam, the Baha'i Faith, and other Abrahamic religions. The Bible is an anthology (a compilation of texts of a variety of forms) originally written in Hebrew, Aramaic, and Koine Greek. The texts include instructions, stories, poetry, prophecies, and other genres. The collection of materials that are accepted as part of the Bible by a particular religious tradition or community is called a biblical canon. Believers in the Bible generally consider it to be a product of divine inspiration, but the way they understand what that means and interpret the text varies. The religious texts were compiled by different religious communities into various official collections. The earliest contained the first five books of the Bible, called the Torah in Hebrew and the Pentateuch (meaning five books) in Greek. The second-oldest part was a collection of narrative histories and prophecies (the Nevi'im). The third collection (the Ketuvim) contains psalms, proverbs, and narrative histories. "Tanakh" is an alternate term for the Hebrew Bible composed of the first letters of those three parts of the Hebrew scriptures: the Torah ("Teaching"), the Nevi'im ("Prophets"), and the Ketuvim ("Writings"). The Masoretic Text is the medieval version of the Tanakh, in Hebrew and Aramaic, that is considered the authoritative text of the Hebrew Bible by modern Rabbinic Judaism. The Septuagint is a Koine Greek translation of the Tanakh from the third and second centuries BC; it largely overlaps with the Hebrew Bible. Christianity began as an outgrowth of Second Temple Judaism, using the Septuagint as the basis of the Old Testament. The early Church continued the Jewish tradition of writing and incorporating what it saw as inspired, authoritative religious books. The gospels, Pauline epistles, and other texts quickly coalesced into the New Testament. With estimated total sales of over five billion copies, the Bible is the best-selling publication of all time. It has had a profound influence both on Western culture and history and on cultures around the globe. The study of it through biblical criticism has indirectly impacted culture and history as well. The Bible is currently translated or is being translated into about half of the world's languages.
1290
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AE%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BF%E0%A6%B7%E0%A7%8D%E0%A6%95
মস্তিষ্ক
মস্তিষ্ক : কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রের স্ফীত, তরল দ্বারা পূর্ণ গহ্বরযুক্ত ও মেনিনজেস নামক আবরণী দ্বারা আবৃত যে অংশটি করোটির ভেতরে অবস্থান করে তাকে মস্তিষ্ক বলে। ভ্রুণ অবস্থায় সুষুম্নাকান্ডের অগ্রবর্তী দন্ডাকার অংশ ভাঁজ হয়ে পর পর ৩টি বিষমাকৃতির স্ফীতি তৈরী করে৷ স্ফীতি ৩টি মিলেই গঠিত হয় মস্তিষ্ক৷ প্রাপ্তবয়স্ক লোকের মস্তিষ্কের আয়তন ১৫০০ ঘন সেন্টিমিটার, গড় ওজন ১.৩৬ কেজি এবং এতে প্রায় 100 বিলিয়ন নিউরন থাকে। মস্তিষ্ক মেনিনজেস নামক পর্দা দ্বারা আবৃত। মানুষের মস্তিষ্কের প্রধান তিনটি অংশ। যথা- (ক) গুরুমস্তিষ্ক (খ) মধ্যমস্তিষ্ক (গ) লঘুমস্তিষ্ক (ক) গুরুমস্তিষ্ক: মস্তিষ্কের প্রধান অংশ হলো গুরুমস্তিষ্ক। এটি ডান ও বাম খণ্ডে বিভক্ত। এদের ডান ও বাম সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার বলে। মানব মস্তিষ্কের সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার অধিকতর উন্নত ও সুগঠিত। (খ) মধ্যমস্তিষ্ক: গুরুমস্তিষ্ক ও পনস এর মাঝখানে মধ্যমস্তিস্ক অবস্থিত। মধ্যমস্তিষ্ক দৃষ্টিশক্তি,শ্রবণশক্তির সাথে সম্পর্কযুক্ত। (গ) লঘুমস্তিষ্ক : লঘুমস্তিষ্ক গুরুমস্তিষ্কের নিচে ও পশ্চাতে অবস্থিত। এটা গুরু মস্তিষ্কের চেয়ে আকারে ছোট। লঘুমস্তিষ্ক কথা বলা ও চলাফেরা নিয়ন্ত্রণ করে। এর তিনটি অংশ যথা- সেরিবেলাম পনস মেডুলা স্নায়ুকোষ ও স্নায়ুসন্ধি মানবমস্তিষ্কের মূল গঠন-উপাদান হল স্নায়ুকোষ। মস্তিষ্কে মোট ১০০০ কোটি স্নায়ুকোষ বা নিউরন থাকে। এই কোষগুলো বৈদ্যুতিক সংকেতের আকারে অনুভূতি পরিবহন করতে পারে। এদের দুই প্রান্তে যে শাখাপ্রশাখার মত প্রবর্ধক থাকে তারা হল ডেন্ড্রাইট, আর মূল তন্তুর মত অংশের নাম অ্যাক্সন। ডেন্ড্রাইট হল সংকেতগ্রাহক অ্যান্টেনার মত, যা অন্য নিউরন থেকে সংকেত গ্রহণ করে। অ্যাক্সন সেই সংকেত পরিবহন করে অপরপ্রান্তের ডেন্ড্রাইটে নিয়ে যায়। দুটি বা ততোধিক নিউরোনের সংযোগস্থলকে বলে সিন্যাপস, যেখানে এদের সংকেত বিনিময় হয়। মূলত একটি নিউরনের অ্যাক্সন এবং অপর একটি নিউরনের ডেনড্রাইটের মিলনস্থলকে স্নায়ুসন্ধি (সিন্যাপস) বলে। মানুষের করটেক্সে মোটামুটি ১০,০০০ এর মত সিন্যাপস থাকে। মানুষের সেরিব্রামের বাম অংশ তুলনামূকভাবে বেশি উন্নত৷ সেরিব্রামকে গুরুমস্তিষ্কও বলা হয়৷ সেরিব্রামের ভিতরের অংশে স্নায়ুতন্ত থাকে৷ এই অংশটি শ্বেত বর্ণের এবং বাইরের অংশ ধূসর বর্ণের। সেরিব্রামের ডান খণ্ড শরিরের বাম অঞ্চল এবং সেরিব্রামের বাম খণ্ড শরিরের ডান অঞ্চল নিয়ন্ত্রণ করে। মস্তিষ্কের বিভাগ মানুষের মস্তিষ্ক ৩ ভাগে বিভক্ত ৷ অগ্র মস্তিষ্ক (Fore brain/ Prosencephalon) "টেলেনসেফালন=সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার"দ্বয় (telencephalon=cerebral hemispheres) ডায়েনসেফালন (Diencephalon) থ্যালামাস (thalamus) এবং এপিথ্যালামাস, সাবথ্যালামাস, মেটাথ্যালামাস হাইপোথ্যালামাস (ও পশ্চাৎ পিটুইটারি গ্রন্থি) এই অগ্র মস্তিষ্ক ২ ভাগে বিভক্ত- ১.ডান সেরিব্রাল হেমিস্ফিয়ার ২.বাম সেরাব্রাল হেমিস্ফিয়ার মধ্য মস্তিষ্ক (Mid brain/ mesencephalon) "সেরিব্রাল পেডাঙ্কল"দ্বয় (Cerebral peduncles) সাবস্ট্যানসিয়া নাইগ্রা (Substantia nigra) পশ্চাৎ মস্তিষ্ক (hindbrain/ rhombencephalon) মেটেনসেফালন (Metencephalon) পন্স ও সেরিবেলাম মেডুলা অবলঙ্গাটা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ The Society for Neuroscience IBRO (International Brain Research Organization) The HOPES Brain Tutorial at hopes.stanford.edu Comparative Mammalian Brain Collection Brain Research News from ScienceDaily BrainInfo for Neuroanatomy Neuroscience for kids BrainMaps.org, interactive high-resolution digital brain atlas based on scanned images of serial sections of both primate and non-primate brains The Brain from Top to Bottom The Department of Neuroscience at Wikiversity The Secret Life of the Brain : History of the Brain from PBS University of Washington 3D animations of brain regions - click through from "Click for copyright" Cell Centered Database মস্তিষ্ক স্নায়ুতন্ত্র অঙ্গ অঙ্গ অনুযায়ী মানব শারীরস্থান প্রাণি শারীরস্থান
https://en.wikipedia.org/wiki/Brain
Brain
The brain is an organ that serves as the center of the nervous system in all vertebrate and most invertebrate animals. It consists of nervous tissue and is typically located in the head (cephalization), usually near organs for special senses such as vision, hearing and olfaction. Being the most specialized organ, it is responsible for receiving information from the sensory nervous system, processing those information (thought, cognition, and intelligence) and the coordination of motor control (muscle activity and endocrine system). While invertebrate brains arise from paired segmental ganglia (each of which is only responsible for the respective body segment) of the ventral nerve cord, vertebrate brains develop axially from the midline dorsal nerve cord as a vesicular enlargement at the rostral end of the neural tube, with centralized control over all body segments. All vertebrate brains can be embryonically divided into three parts: the forebrain (prosencephalon, subdivided into telencephalon and diencephalon), midbrain (mesencephalon) and hindbrain (rhombencephalon, subdivided into metencephalon and myelencephalon). The spinal cord, which directly interacts with somatic functions below the head, can be considered a caudal extension of the myelencephalon enclosed inside the vertebral column. Together, the brain and spinal cord constitute the central nervous system in all vertebrates. In humans, the cerebral cortex contains approximately 14–16 billion neurons, and the estimated number of neurons in the cerebellum is 55–70 billion. Each neuron is connected by synapses to several thousand other neurons, typically communicating with one another via root-like protrusions called dendrites and long fiber-like extensions called axons, which are usually myelinated and carry trains of rapid micro-electric signal pulses called action potentials to target specific recipient cells in other areas of the brain or distant parts of the body. The prefrontal cortex, which controls executive functions, is particularly well developed in humans. Physiologically, brains exert centralized control over a body's other organs. They act on the rest of the body both by generating patterns of muscle activity and by driving the secretion of chemicals called hormones. This centralized control allows rapid and coordinated responses to changes in the environment. Some basic types of responsiveness such as reflexes can be mediated by the spinal cord or peripheral ganglia, but sophisticated purposeful control of behavior based on complex sensory input requires the information integrating capabilities of a centralized brain. The operations of individual brain cells are now understood in considerable detail but the way they cooperate in ensembles of millions is yet to be solved. Recent models in modern neuroscience treat the brain as a biological computer, very different in mechanism from a digital computer, but similar in the sense that it acquires information from the surrounding world, stores it, and processes it in a variety of ways. This article compares the properties of brains across the entire range of animal species, with the greatest attention to vertebrates. It deals with the human brain insofar as it shares the properties of other brains. The ways in which the human brain differs from other brains are covered in the human brain article. Several topics that might be covered here are instead covered there because much more can be said about them in a human context. The most important that are covered in the human brain article are brain disease and the effects of brain damage.
1293
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A7%8D%E2%80%8C%E0%A6%9F%E0%A6%BE%E0%A6%B8
ক্যাক্‌টাস
ক্যাক্‌টাস () হচ্ছে Caryophyllales বর্গের এবং Cactaceae পরিবারের উদ্ভিদ। শব্দটি লাতিন ভাষার κάκτος (kaktos) থেকে এসেছে। এটি সালোকসংশ্লেষের জন্যে ক্যাম (ক্রাসুলেসিয়ান অ্যাসিড মেটাবোলিজম) বিপাক পথ ব্যবহার করে। ক্যাক্‌টাস ঘরের ভেতর টবে লাগানো হলে ১০ থেকে ৪০ বছর এবং জমিতে আরও বেশি বছর বেঁচে থাকে পারে। জাত প্রায় দুই হাজার জাত আছে। যেমন কোচিনেলিফেরা, মনাকাটা, নাইগ্রিকান্স, ওপানসিয়া ইত্যাদি। ক্যাকটাসের অভিযোজন যে সমস্ত এলাকায় জলের পরিমাণ কম সেখানে বিশেষ ধরনের উদ্ভিদ জন্মায়। মরুভূমিতে, অথবা উঁচু শুকনো এলাকায়, যে উদ্ভিদ জন্মায় তাদের জাঙ্গল উদ্ভিদ (Xerophytes) বলা হয়। ফণিমনসা, তেশিরা মনসা ইত্যাদি ক্যাকটাস জাতীয় জাঙ্গল উদ্ভিদ। বিভিন্ন ধরনের ক্যাকটাসের অভিযোজন-কৌশল প্রায় একই তা উল্লেখ করা হলঃ মূল (Roots): ক্যাকটাসের মূল মাটির বিস্তীর্ণ এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। শুকনো মাটিতে এই সব উদ্ভিদ জন্মায়। যাতে মাটির সামান্য পরিমাণ জলও উদ্ভিদ গ্রহণ করতে পারে। তার ব্যবস্থা মূলে থাকে। ক্যাকটাসের মূলের কোষে বড় বড় কোষগহ্বর দেখা যায়। কোষগহ্বরের কোষরসের অভিস্রবণ চাপ বেশী হওয়ায় মূলের জল শোষণ ক্ষমতা খুব বেশী হয়। পর্ণকাণ্ড (Phylloclade): কাণ্ড পরিবর্তিত হয়ে চ্যাপ্টা, গোল বা বিভিন্ন আকৃতির হতে পারে। এই ধরনের কাণ্ড বেশ রসালো হয়। কাণ্ডে প্রচুর ক্লোরোফিল থাকায় এর রঙ সবুজ। কাণ্ডের বাইরে পুরু কিউটিকল (Cuticle) আবরণ দেখা যায়। ফলে বাষ্পমোচনের হার খুব কম হয়। এই রকম পরিবর্তিত রসাল কাণ্ডকে পর্ণকাণ্ড (Phylloclade) বলে। পত্রকন্টক (Spines): অভিযোজনের ফলেই ক্যাকটাসের পাতা কাঁটায় পরিবর্তিত হয়। এতে বাষ্পমোচনের প্রক্রিয়া হ্রাস পায়। এছাড়া পত্রকন্টক উদ্ভিদের আত্মরক্ষার সহায়ক। পুষ্টি (Nutrition): ক্যাকটাস জাতীয় উদ্ভিদ স্বভোজী। এরা সালোকসংশ্লেষে খাদ্য উৎপন্ন করতে পারে। রসালো, সবুজ রঙের পরিবর্তিত কান্ডই সালোক-সংশ্লেষে অংশ নেয়। কোষগুলিতে মিউসিলেজ নামে গঁদ জাতীয় পদার্থ থাকায় জলধারণ ক্ষমতা বেশী হয়। জনন (Reproduction): বীজ সৃষ্টির মাধ্যমে যৌন উপায়ে বা অঙ্গজ বিস্তারে এদের জনন ঘটে। পর্ণকান্ডের এক-একটি ছোট ছোট অংশ আলাদা হয়ে মাটিতে পড়লে সহজেই তা থেকে অপত্য উদ্ভিদ জন্মায়। চিত্রশালা তথ্যসূত্র উদ্ভিদ খরা সহনশীল উদ্ভিদ কার্ল লিনিয়াস কর্তৃক নামকরণকৃত ট্যাক্সা
https://en.wikipedia.org/wiki/Cactus
Cactus
A cactus (pl.: cacti, cactuses, or less commonly, cactus) is a member of the plant family Cactaceae (), a family comprising about 127 genera with some 1,750 known species of the order Caryophyllales. The word cactus derives, through Latin, from the Ancient Greek word κάκτος (káktos), a name originally used by Theophrastus for a spiny plant whose identity is now not certain. Cacti occur in a wide range of shapes and sizes. They are native to the Americas, ranging from Patagonia in the south to parts of western Canada in the north, with the exception of Rhipsalis baccifera, which is also found in Africa and Sri Lanka. Cacti are adapted to live in very dry environments, including the Atacama Desert, one of the driest places on Earth. Because of this, cacti show many adaptations to conserve water. For example, almost all cacti are succulents, meaning they have thickened, fleshy parts adapted to store water. Unlike many other succulents, the stem is the only part of most cacti where this vital process takes place. Most species of cacti have lost true leaves, retaining only spines, which are highly modified leaves. As well as defending against herbivores, spines help prevent water loss by reducing air flow close to the cactus and providing some shade. In the absence of true leaves, cacti's enlarged stems carry out photosynthesis. Cactus spines are produced from specialized structures called areoles, a kind of highly reduced branch. Areoles are an identifying feature of cacti. As well as spines, areoles give rise to flowers, which are usually tubular and multipetaled. Many cacti have short growing seasons and long dormancies and are able to react quickly to any rainfall, helped by an extensive but relatively shallow root system that quickly absorbs any water reaching the ground surface. Cactus stems are often ribbed or fluted with a number of ribs which corresponds to a number in the Fibonacci numbers (2, 3, 5, 8, 13, 21, 34 etc.). This allows them to expand and contract easily for quick water absorption after rain, followed by retention over long drought periods. Like other succulent plants, most cacti employ a special mechanism called "crassulacean acid metabolism" (CAM) as part of photosynthesis. Transpiration, during which carbon dioxide enters the plant and water escapes, does not take place during the day at the same time as photosynthesis, but instead occurs at night. The plant stores the carbon dioxide it takes in as malic acid, retaining it until daylight returns, and only then using it in photosynthesis. Because transpiration takes place during the cooler, more humid night hours, water loss is significantly reduced. Many smaller cacti have globe-shaped stems, combining the highest possible volume for water storage with the lowest possible surface area for water loss from transpiration. The tallest free-standing cactus is Pachycereus pringlei, with a maximum recorded height of 19.2 m (63 ft), and the smallest is Blossfeldia liliputiana, only about 1 cm (0.4 in) in diameter at maturity. A fully grown saguaro (Carnegiea gigantea) is said to be able to absorb as much as 200 U.S. gallons (760 L; 170 imp gal) of water during a rainstorm. A few species differ significantly in appearance from most of the family. At least superficially, plants of the genera Leuenbergeria, Rhodocactus and Pereskia resemble other trees and shrubs growing around them. They have persistent leaves, and when older, bark-covered stems. Their areoles identify them as cacti, and in spite of their appearance, they, too, have many adaptations for water conservation. Leuenbergeria is considered close to the ancestral species from which all cacti evolved. In tropical regions, other cacti grow as forest climbers and epiphytes (plants that grow on trees). Their stems are typically flattened, almost leaf-like in appearance, with fewer or even no spines, such as the well-known Christmas cactus or Thanksgiving cactus (in the genus Schlumbergera). Cacti have a variety of uses: many species are used as ornamental plants, others are grown for fodder or forage, and others for food (particularly their fruit). Cochineal is the product of an insect that lives on some cacti. Many succulent plants in both the Old and New World – such as some Euphorbiaceae (euphorbias) – are also spiny stem succulents and because of this are sometimes incorrectly referred to as "cactus".
1294
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%BE%20%28%E0%A6%B9%E0%A6%BF%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A7%81%E0%A6%A7%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AE%29
পঞ্জিকা (হিন্দুধর্ম)
পঞ্জিকা (বা পাঁজি) হলো বাংলা, ওড়িয়া, মৈথিলী এবং অসমীয়া ভাষায় প্রকাশিত হিন্দু জ্যোতির্বিজ্ঞানীয় পঞ্জিকা। আড়ম্বরপূর্ণ ভাষায় একে ‘পাঁজি’ বলা হয়। ভারতের অন্যান্য অঞ্চলে একে পঞ্চঙ্গম বলা হয়। এটি ভারতে প্রকাশিত সর্বাধিক জনপ্রিয় বার্ষিক বইগুলির মধ্যে অন্যতম এবং এটি পর্যবেক্ষক হিন্দুদের তাদের ধর্মীয় অনুষ্ঠান, উৎসব, উদ্‌যাপন এবং বিবাহ, ভ্রমণ, ইত্যাদিসহ বিভিন্ন প্রকারের সাধনার জন্য সর্বাধিক শুভ সময় নির্ধারণ করার একটি সহজ রেফারেন্স। কোনও কোনও পুরোহিত বা জ্যোতিষীর কাছে বিশদ সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে এটি কিছুটা প্রস্তুত-গণনাকারী বা প্রথম উৎস। এমনকি হিন্দুদের মধ্যে ‘অবিশ্বাসী’ এবং যারা হিন্দু নন তারা প্রায়শই ব্যবহারিক তথ্যের জন্য একটি পঞ্জিকার প্রকাশিত তথ্যের পরামর্শ নেন। এটিতে মুসলমান, খ্রিস্টান এবং অন্যান্য উৎসব, অনেক শীর্ষস্থানীয় ব্যক্তিত্বের জন্ম ও মৃত্যুর তারিখ লিপিবদ্ধ করে এবং জ্যোতিষশাস্ত্র সম্পর্কিত তথ্যমূলক নিবন্ধ থাকে। বাঙালিদের মধ্যে বেণীমাধব শীলের ফুল পঞ্জিকাটি হলো অন্যতম জনপ্রিয় ও বহুল ব্যবহৃত পঞ্জিকা। তবে ১৮৯০ খ্রিস্টাব্দে প্রখ্যাত গণিতজ্ঞ মাধবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায় প্রবর্তিত বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা বিজ্ঞানসম্মত এবং অনেকেই তা অনুসরণ করেন। ওড়িয়া পাঁজি ওড়িয়ায় ছয়টি পাঁজি রয়েছে, সেগুলি হলো: আসালি খাদিরত্ন পাঞ্জিকা, বিরাজা পাঁজি, ভাগ্যাদায়া পাঁজি, কোহিনূর পাঁজি, গৌড়িয়া বিষ্ণব পাঞ্জিকা এবং মাদালা পাঁজি। মাদালাল পাঞ্জি দ্বাদশ শতাব্দী থেকে ভারতীয় আঞ্চলিক ভাষার প্রথম পঞ্জিকা। এটি ওড়িশার ইতিহাসের মূল উৎস এবং প্রমাণ। পাঠানী সমন্ত চন্দ্র শেখর (১৮৩৫ থেকে ১৯০৪) বৈজ্ঞানিক উপায়ে ওড়িয়া পঞ্জিকা পুনরুদ্ধার করেছেন। এবং গৌড়িয়া বিষ্ণব পাঞ্জিকা। মাদালা পাঞ্জি (ওড়িয়া - ମାଦଳ ପାଂଜି) উড়িষ্যার পুরী জগন্নাথ মন্দিরের একটি ক্রনিকল। এটি জগন্নাথ এবং জগন্নাথ মন্দির সম্পর্কিত ওড়িশ্যার ঐতিহাসিক ঘটনা বর্ণনা করে। মাদালা পাঞ্জি দ্বাদশ শতাব্দীর। মাদালা পাঞ্জি ঐতিহ্যগতভাবে বছর-বছর ভিত্তিতে রচিত হয়েছিল। বিজয়া-দশমীর দিন করণাস (ওড়িশ্যার একটি পুরীর পুরির সরকারি ইতিহাস লেখকরা ইতিহাসের ইতিহাস রক্ষায় জড়িত। এই ক্রনিকলটি রাখার ঐতিহ্যটি ওড়িয়া রাজা অনন্তবর্মণ চূড়াগঙ্গা দেব (1078-11150) এর মাধ্যমে শুরু হয়েছিল। ঐতিহ্য অনুসারে,চূড়াগঙ্গা মন্দিরের রেকর্ড সংরক্ষণের জন্য ক্যারানাসের ২৪টি পরিবার তৈরি করেছিলেন। এর মধ্যে পাঁচজনকে মাদালা পাঞ্জির রচনা ও সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা হলো: পাঞ্জিয়া করণ - মাদালা পাঞ্জি সংরক্ষণ করে তাদৌ করণ — লিখেছেন মাদালা পাঞ্জি দেউলা করণ - মাদালা প্রয়োগ করে কথা করণ — মূল সংকলক বৈঁঠি করণ - সহকারী বাঙালি পঞ্জিকা নির্মাতাদের দুটি স্কুল বাংলায় পঞ্জিকা নির্মাতাদের দুটি পদ্ধতি রয়েছে – দৃকসিদ্ধান্ত (বিশুদ্ধসিদ্ধান্ত পঞ্জিকা) এবং অদৃকসিদ্ধান্ত (গুপ্ত প্রেস, পিএম বাগচি ইত্যাদি)। যে দিনগুলিতে উৎসব অনুষ্ঠিত হবে সেগুলি তারা নির্দেশ করে। কখনও কখনও, তারা বিশেষ উৎসব জন্য বিভিন্ন তারিখ নির্দিষ্ট। ২০০৫ সালে দুর্গাপূজার জন্য, দুটি পৃথক তারিখের মধ্য দিয়ে এসেছিল। কিছু সম্প্রদায় পূজা গুপ্ত প্রেস পঞ্জিকা অনুসরণ করেছিল, এর জনপ্রিয়তার কারণে। এটি সম্মেলনের সম্মানের সাথেই ছিল, বৈদিক পণ্ডিত ও পুরুষোহিত মহামিলন কেন্দ্রের সভাপতি পণ্ডিত নিতাই চক্রবর্তী নিশ্চিত করেছেন। বেলুড় মঠ বিশুদ্ধসিদ্ধান্ত পঞ্জিকার প্রতি অনুগত ছিলেন। স্বামী বিজ্ঞানানন্দ (যিনি ১৯৩৭-৩৮ সালে গণিতের রাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন), তিনি একজন জ্যোতিষী ছিলেন, যিনি সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন যে রামকৃষ্ণ মিশন আরও বৈজ্ঞানিক হওয়ায় এই পঞ্জিকা অনুসরণ করবেন। এদের পার্থক্য দুটি স্কুল লুনি-সৌর আন্দোলনের ভিন্ন ক্যালেন্ডার অনুসরণ করে যার তিথি উপর ভিত্তি করে। যদিও গুপ্ত প্রেস পঞ্জিকা ১৬ শতাব্দীতে অনুসরণ রঘুনন্দন রচিত অষ্টবিংশতিতত্ত্ব ১৫০০ বছর বয়সী জ্যোতির্বিদ্যা গ্রন্থ উপর ভিত্তি করে সূর্যসিদ্ধান্ত। বিশুদ্ধসিদ্ধান্ত পঞ্জিকা, সূর্যসিদ্ধান্তের দেওয়া গ্রহের অবস্থানের একটি ১৮৯০ সংশোধনীর উপর ভিত্তি করে। বৈজ্ঞানিক সংস্কার প্রাচীনতম পঞ্জিকা প্রায় খ্রিস্টপূর্ব ১০০০ অবধি। এটি সময় বিশ্লেষণ করে তবে গণনাগুলি সব সময় খুব সঠিক হত না। সূর্যসিদ্ধান্ত, যে যুগে উৎপাদিত, সব পরের পঞ্জিকার এর অগ্রদূত ছিল। ব্রিটিশ শাসনামলে বিশ্বম্ভর আবার হাতে লেখা বই আকারে পঞ্জিকা প্রকাশের কাজ শুরু করেছিলেন। মুদ্রিত সংস্করণটি ১৮৬৯ সালে এসেছিল। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা ১৮৯০ সালে প্রথম প্রকাশিত হয়েছিল। গুপ্ত প্রেস সূর্যসিদ্ধান্তকে মূল বিন্যাসের সাথে অনুসরণ করে যখন ‘সংশোধন’ শাস্ত্রের সংস্করণটিকে বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত বলা হয়। বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পঞ্জিকা অস্তিত্ব নিয়েছিলেন কারণ একজন জ্যোতির্বিদ মাধবচন্দ্র চট্টোপাধ্যায়, পঞ্জিকা অধ্যয়ন করার পরে প্রচলিতভাবে গ্রহ-নক্ষত্রের প্রকৃত এবং জ্যোতিষীয় অবস্থানের মধ্যে পার্থক্য খুঁজে ছিলেন। তিনি বৈজ্ঞানিক পাঠ অনুসারে পঞ্জিকা সংশোধন করেছিলেন। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে অন্যান্য ব্যক্তিরাও ছিলেন যাঁরা পঞ্জিকার বৈজ্ঞানিক পুনর্বিবেচনার পদ্ধতিকে সমর্থন করেছিলেন। এটি উড়িষ্যার মহামহোপাধ্যায় চন্দ্রশেখর সিংহ সামন্ত এবং পুনেতে বাল গঙ্গাধর তিলকের মতো লোককে অন্তর্ভুক্ত করেছিল। ১৯৫২ সালে পঞ্জিকার একটি বড় সংশোধনী ভারত সরকারের নেতৃত্বে গৃহীত হয়েছিল। রূপান্তর গুপ্ত প্রেস, একজন বাঙালি পঞ্জিকা, ২০০৭ সালে একটি সিডি-সংস্করণ প্রকাশ করেছে যা ‘আপনার দিনটি জানুন’, ‘প্রতিদিনের রাশিফল’ এবং ‘কোষ্ঠী বিচার’ (রাশিফল) এর মত ইন্টারেক্টিভ বৈশিষ্ট্যযুক্ত। পঞ্জিকার মূল রূপান্তর রূপান্তর। সময়ের সাথে সাথে এটি আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে পর্যটকদের আকর্ষণ, তীর্থস্থানগুলির স্থান, টেলিফোন কোড এবং সাধারণ মানুষ যে সাধারণ তথ্যের সন্ধান করে তার মতো তথ্য যুক্ত করেছে। বিভিন্ন গোষ্ঠীর চাহিদা পূরণের জন্য এই ফর্ম্যাটটি আরও নমনীয় করা হয়েছে। ‘ডিরেক্টরি পঞ্জিকা’ (ম্যাগনাম ওপাস) ‘পূর্ণ পঞ্জিকা’ (পাতলা সংস্করণ) এবং ‘অর্ধ পঞ্জিকা’ (সংক্ষিপ্ত সংস্করণ) এবং ‘পকেট পঞ্জিকা’-এর মতো রূপগুলির আলাদা আলাদা দাম রয়েছে। পকেট পঞ্জিকা স্থানীয় ট্রেনগুলিতে হকারদের আনন্দ। ১৯৩০ এর দশকে প্রকাশিত মদন গুপ্তের সম্পূর্ণ পঞ্জিকা বাহ্যিকভাবে খুব বেশি পরিবর্তন হয়নি। পুরু গোলাপী কাগজে কভারটি এখনও একইরকম, তবে অভ্যন্তরটি খুব আলাদা। পৃষ্ঠাগুলি মোটা নিউজপ্রিন্ট থেকে মসৃণ সাদা কাগজে পরিবর্তিত হয়েছে, লেটার প্রেসগুলি অফসেট প্রিন্টিংয়ের পথ তৈরি করেছে, কাঠের ব্লকগুলি ধারালো ফটোগ্রাফ দ্বারা প্রতিস্থাপন করা হয়েছে। সবচেয়ে বড় পার্থক্যটি হলো বিজ্ঞাপন-সম্পাদকীয় অনুপাতের। পূর্বে বিজ্ঞাপনগুলি মুদ্রিত পদার্থের বেশিরভাগ অংশ তৈরি করেছিল - এবং খাঁটি আনন্দ ছিল। "যখন টিভি ছিল না এবং এতগুলি সংবাদপত্র ছিল না, তখন পঞ্জিকা অনেকগুলি পণ্যের বিজ্ঞাপনের জায়গা ছিল। "বিজ্ঞাপনের জন্য অনেকেই পঞ্জিকা কিনেছিলেন," মালিক মহেন্দ্র কুমার গুপ্ত বলেছেন, "তারা অনেকগুলি 'অযোগ্য' রোগের সমাধান দিতে পারে।" 1938 সংস্করণ একটি "বৈদ্যুতিক সমাধান" - এর একটি পূর্ণ পৃষ্ঠার বিজ্ঞাপন দিয়ে শুরু হয়েছিল, যা মৃত লোকদের পুনরুত্থিত করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিল। এখন তারা লন্ডন, ওয়াশিংটন এবং নিউ ইয়র্কে সূর্যাস্ত এবং সূর্যোদয়ের ভিত্তিতে দুর্গাপূজার সময় প্রকাশ করে। গুপ্ত প্রেসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অরিজিৎ রায়চৌধুরির মতে, পূর্বের রাজ্যের পূর্ব অংশে বাজারটি নষ্ট হয়ে যাওয়ায় ভারত বিভাগের পরে পঞ্জিকা বিক্রয় হ্রাস পেয়েছে। যাই হোক, ফর্ম্যাট এবং সামগ্রীর অভিনব রূপান্তরের সাথে সাথে বিক্রয়ও বেড়েছে এবং ২০০৭ এর সামগ্রিক বার্ষিক বাজারটি ২০ লাখ কপি। চিত্রটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্যের বিক্রয় অন্তর্ভুক্ত। পাঞ্জিকরা আধুনিক দিনের শপিংমলগুলিতেও প্রবেশ করেছে। আরপিজি গ্রুপের এক প্রবীণ কর্মকর্তা মণি শঙ্কর মুখোপাধ্যায়, যিনি নিজে একজন খ্যাতিমান লেখক, বলেছেন, “গুড়গাঁয়ে আমাদের স্পেনসারের স্টোর রেকর্ড সংখ্যক পাঞ্জিকা বিক্রি করেছে।” বাংলা পঞ্জিকা অনুসরণ বাংলা ক্যালেন্ডার এবং মাসে আউট সাধারনত চৈত্র, তাই মানুষ এটা আগে ভাল কিনতে পারেন যে পহেলা বৈশাখ। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পাঞ্জিকা সফটওয়্যার আপনার পিসি এবং মোবাইলের জন্য ৫০০০ খ্রিস্টপূর্ব থেকে ৫০০০ খ্রিস্টাব্দ বিশুদ্ধ সিদ্ধান্ত পাঞ্জিকা অনুসারে বাংলা ক্যালেন্ডার (ভারতীয় স্ট্যান্ডার্ড সময় অনুসরণ করে) জগন্নাথ পাঞ্জি / মাদালা পাঞ্জি। পূর্ব ভারতের প্রাচীনতম পানজি মাদালা পাঞ্জি ওড়িয়া পাঞ্জি নতুন ওড়িয়া পাঞ্জিকা 2017-18 বিশুদ্ধ পূর্ণাঙ্গ পাঞ্জিকা - প্রবোধ শর্মা বাংলা পঞ্জিকার মাস বাঙালি সংস্কৃতি আসামের সংস্কৃতি বাংলাদেশের ইতিহাস বাংলার ইতিহাস পশ্চিমবঙ্গের ইতিহাস কলকাতার সংস্কৃতি মিথিলার সংস্কৃতি ওড়িশার সংস্কৃতি
https://en.wikipedia.org/wiki/Panjika
Panjika
The Panjika (IAST: Pañjikā; Assamese: পঞ্জিকা; Bengali: পঞ্জিকা; Maithili: পাঁজিক, पाँजिक; Nepali: पञ्जिका; Odia: ପଞ୍ଜିକା) is the Hindu astronomical almanac, published in Assamese, Bengali, Maithili, Nepali and Odia languages and colloquially known as Panji (IAST: Pāñji; Assamese: পাঁজি; Bengali: পাঞ্জি; Odia: ପାଞ୍ଜି). In other parts of India it is called panchangam.
1295
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%BE%E0%A6%A1%E0%A6%BE
কানাডা
কানাডা () উত্তর আমেরিকার উত্তরাংশে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। এর দশটি প্রদেশ ও তিনটি অঞ্চল আটলান্টিক মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর এবং উত্তরে আর্কটিক মহাসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত। ‌এটি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্র। কানাডার অধিকৃত ভূমি প্রথম বসবাসের জন্য চেষ্টা চালায় আদিবাসী জনগোষ্ঠীসমূহ। পঞ্চদশ শতকের শুরুতে ইংরেজ এবং ফরাসি অভিযাত্রীরা আটলান্টিক উপকূল আবিষ্কার করে এবং পরে বসতি স্থাপনের উদ্যোগ নেয়। ফ্রান্স দীর্ঘ সাত বছরের যুদ্ধে পরাজয়ের ফলস্বরূপ ১৭৬৩ সালে উত্তর আমেরিকায় তাদের সব উপনিবেশ ব্রিটিশদের কাছে ছেড়ে দেয়। ১৮৬৭ সালে, মিত্রতার মধ্য দিয়ে চারটি স্বায়ত্তশাসিত প্রদেশ নিয়ে দেশ হিসেবে কানাডা গঠন করা হয়। এর ফলে আরো প্রদেশ এবং অঞ্চল সংযোজনের পথ সুগম,এবং ইংল্যান্ড থেকে স্বায়ত্তশাসন পাওয়ার প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত হয়। ১৯৮২ সালে জারীকৃত কানাডা অ্যাক্ট অনুসারে, দশটি প্রদেশ এবং তিনটি অঞ্চল নিয়ে গঠিত কানাডা সংসদীয় গণতন্ত্র এবং আইনগত রাজ্যতন্ত্র উভয়ই মেনে চলে। রাষ্ট্রের প্রধান রাজা তৃতীয় চার্লস ও রাষ্ট্রের সরকার প্রধান প্রধানমন্ত্রী এবং কানাডার সরকারি ভাষা ইংরেজি ও ফরাসি। কানাডীয় শিল্ড অঞ্চল উত্তর আমেরিকার উত্তর-পূর্বাংশে যে প্রাচীন শিলা গঠিত ক্ষয়প্রাপ্ত মালভূমি অবস্থান করছে তাকে কানাডীয় শিল্ড অঞ্চল অথবা 'লরেন্সিয় মালভূমি' বলা হয়। বিরাট 'V' আকৃতির এই অঞ্চলটি কানাডার উত্তরাংশে হাডসন উপসাগরকে বেষ্টন করে রয়েছে। পৃথিবীর মোট ১১টি শিল্ড অঞ্চলের মধ্যে এটি বৃহত্তম। 'শিল্ড' কথার অর্থ বর্ম বা ঢাল, তবে এক্ষেত্রে এর অর্থ শক্ত পাথুরে তরঙ্গায়িত ভূমিরূপ। ব্যুৎপত্তি "কানাডা" নামটি সম্ভবত এসেছে সেন্ট লরেন্স ইরোকোয়াইয়ান (St. Lawrence Iroquoian) শব্দ "কানাটা" (kanata) থেকে, যার অর্থ "জেলেদের ক্ষুদ্র গ্রাম", "গ্রাম", অথবা "বসতি"। ১৫৩৫ সালের দিকে, বর্তমান ক্যুবেক শহরের বসবাসকারীরা অভিযাত্রী জ্যাক কার্তিয়ারকে (Jacques Cartier) স্টেইডাকোনা (Stadacona) গ্রামের দিকে পথনির্দশনের সুবিধার্থে শব্দটি ব্যবহার করেছিল । কার্তিয়ার 'কানাডা' শব্দটি ব্যবহার করেছিল শুধুমাত্র গ্রামটি চিহ্নিত করতেই নয়, বরং গ্রাম্য-প্রধান ডোন্নাকোনা (Donnacona) সম্পর্কিত সব কিছু নির্দেশ করতে। ১৫৪৫ সাল নাগাদ, ইউরোপের বই এবং মানচিত্রে এই অঞ্চলকে "কানাডা" হিসেবে নির্দেশিত করা শুরু হয়। কানাডায় ফরাসি উপনিবেশকে "নব্য ফ্রান্স" (New France) বলা হত, যার বিস্তৃতি ছিল সেন্ট লরেন্স নদী থেকে গ্রেইট লেইকসের উত্তর উপকূল পর্যন্ত। পরবর্তীতে, ১৮৪১ সাল পর্যন্ত, এটি যথাক্রমে "উচ্চ কানাডা" এবং "নিম্ন কানাডা" নামক দুটি ইংরেজ উপনিবেশে বিভক্ত থাকে। কানাডা অ্যাক্ট ১৯৮২ অনুসারে, "কানাডা"ই একমাত্র আইনগত এবং দ্বিভাষিক নাম। ১৯৮২ সালে সরকারী ছুটি 'ডোমিনিয়ান ডে' কে পরিবর্তন করে 'কানাডা ডে' করা হয়। রাজনীতি কানাডা একটি ফেডারেশন যাতে সংসদীয় গণতন্ত্রভিত্তিক সরকারব্যবস্থা এবং একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র প্রচলিত। কানাডার সরকার দুই ভাগে বিভক্ত। কেন্দ্রীয় সরকার এবং প্রাদেশিক বা আঞ্চলিক সরকার। প্রশাসনিক অঞ্চলগুলির তুলনায় প্রদেশগুলিতে স্বায়ত্তশাসনের পরিমাণ বেশি। কানাডার বর্তমান সংবিধান ১৯৮২ সালে রচিত হয়। এই সংবিধানে পূর্বের সাংবিধানিক আদেশগুলি একটিমাত্র কাঠামোয় একত্রিত করা হয় এবং এতে অধিকার ও স্বাধীনতার উপর একটি চার্টার যোগ করা হয়। এই সংবিধানেই প্রথম কানাডার নিজস্ব স্থানীয় সরকারকে তার সংবিধানের উপর পূর্ণ ক্ষমতা প্রদান করা হয়। পূর্বে কানাডা ১৮৬৭ সালে প্রণীত ব্রিটিশ উত্তর আমেরিকা অধ্যাদেশবলে পরিচালিত হত এবং এতে ও এর পরে প্রণীত আইনসমূহে ব্রিটিশ সরকারকে কিছু সাংবিধানিক ক্ষমতা প্রদান করা হয়েছিল। ভূগোল আয়তনের বিচারে কানাডা বিশ্বের ২য় বৃহত্তম রাষ্ট্র। এটি উত্তর আমেরিকা মহাদেশের প্রায় ৪১% নিয়ে গঠিত। কানাডা হচ্ছে পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম এবং শীতলতম দেশ। উত্তর আমেরিকার এই দেশটিতে ছয়টি সময় অঞ্চল বিদ্যমান। এই দেশের জলবায়ুতে গ্রীষ্মকালে হালকা ভ্যাপসা ঠান্ডা, ভিজা কুয়াশা (কিছুসময়ে গরম রৌদ্রসম্পন্ন), শীতকালে ভীষণ ঠান্ডা, বরফাচ্ছন্ন, শুষ্ক এবং তুষারপাত ইত্যাদি দ্বারা থাকে। এ দেশে প্রতিদিন আর্কটিক বরফাচ্ছন্নের দ্বারা শৈত্যপ্রবাহ সৃষ্টি হয়। এই জলবায়ুটি রাশিয়ার তুলনায় সমতুল্য। এই দেশে রাশিয়ার জলবায়ুর মত শৈত্যপূর্ণ এবং হিমশীতল। এই দেশে বছরে ৮ মাস বরফাচ্ছন্ন থাকে। বরং এদেশে থাকাটা কিছু অনুকূল আবার কিছু প্রতিকুল আছে এবং মানুষ ঠান্ডায় অভ্যস্ত। অর্থনীতি কানাডা বিশ্বের সবচেয়ে ধনী দেশগুলির একটি। দেশটি অর্গানাইজেশন ফর ইকোনমিক কোঅপারেশন অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট (ওইসিডি) এবং জি৮ গ্রুপের সদস্য। অন্যান্য উন্নতদেশগুলির মত কানাডার অর্থনীতির সিংহভাগ সেবামূলক শিল্প নিয়ে গঠিত। প্রায় তিন চতুর্থাংশ কানাডাবাসী কোন না কোন সেবা শিল্পের সাথে যুক্ত আছেন। কাঠ ও খনিজ তেল আহরণ শিল্প কানাডার প্রধানতম দুইটি ভারী শিল্প। এছাড়া দক্ষিণ ওন্টারিও-কে কেন্দ্র করে একটি উৎপাদন শিল্পব্যবস্থা গড়ে উঠেছে। এগুলির মধ্যে মোটরযান উৎপাদন শিল্প প্রধানতম। ভাষা ইংরেজি ভাষা ও ফরাসি ভাষা যৌথভাবে কানাডার সরকারি ভাষা। কানাডার কেবেক (Quebec) প্রদেশে ফরাসি ভাষা প্রাদেশিক সরকারি ভাষা। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাধারণত ইংরেজি ভাষা ব্যবহার করা হয়। এছাড়াও বহু ইউরোপীয় অভিবাসী ভাষার প্রচলন আছে। এদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য তিনটি জার্মান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের ভাষা --- হাটারীয়, মেনোনীয়, এবং পেনসিলভেনীয়। কানাডার প্রায় দেড় লক্ষ আদিবাসী আমেরিকান ৭০টিরও বেশি ভাষাতে কথা বলে। এই স্থানীয় ভাষাগুলির মধ্যে ব্ল্যাকফুট, চিপেউইয়ান, ক্রে, ডাকোটা, এস্কিমো, ওজিবওয়া উল্লেখযোগ্য। এখানকার স্থানীয় প্রধান প্রধান ভাষাপরিবারের মধ্যে আছে আলগোংকিন, আথাবাস্কান, এস্কিমো-আলেউট, ইরোকোইয়ান, সিউয়ান এবং ওয়াকাশান ভাষাপরিবার। এছাড়াও অনেক বিচ্ছিন্ন ভাষাও রয়েছে। সামরিক বাহিনী বর্তমান কানাডীয় সামরিক বাহিনী ১৯৬৮ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। এটিতে এখন প্রায় ৬২ হাজার সদস্য সক্রিয় আছেন। রিজার্ভে আছেন ২৫ হাজার সদস্য, যার মধ্যে ৪ হাজার কানাডীয় রেঞ্জার্সও আছেন। তথ্যসূত্র উত্তর আমেরিকার রাষ্ট্র ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র জি২০ সদস্য ন্যাটোর সদস্য রাষ্ট্র ওইসিডি সদস্য ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য সার্বভৌম রাষ্ট্র ১৮৬৭-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল
https://en.wikipedia.org/wiki/Canada
Canada
Canada is a country in North America. Its ten provinces and three territories extend from the Atlantic Ocean to the Pacific Ocean and northward into the Arctic Ocean, making it the world's second-largest country by total area, with the world's longest coastline. Its border with the United States is the world's longest international land border. The country is characterized by a wide range of both meteorologic and geological regions. It is a sparsely inhabited country of just over 41 million people, the vast majority residing south of the 55th parallel in urban areas. Canada's capital is Ottawa and its three largest metropolitan areas are Toronto, Montreal, and Vancouver. Indigenous peoples have continuously inhabited what is now Canada for thousands of years. Beginning in the 16th century, British and French expeditions explored and later settled along the Atlantic coast. As a consequence of various armed conflicts, France ceded nearly all of its colonies in North America in 1763. In 1867, with the union of three British North American colonies through Confederation, Canada was formed as a federal dominion of four provinces. This began an accretion of provinces and territories and a process of increasing autonomy from the United Kingdom, highlighted by the Statute of Westminster, 1931, and culminating in the Canada Act 1982, which severed the vestiges of legal dependence on the Parliament of the United Kingdom. Canada is a parliamentary democracy and a constitutional monarchy in the Westminster tradition. The country's head of government is the prime minister, who holds office by virtue of their ability to command the confidence of the elected House of Commons and is appointed by the governor general, representing the monarch of Canada, the ceremonial head of state. The country is a Commonwealth realm and is officially bilingual (English and French) in the federal jurisdiction. It is very highly ranked in international measurements of government transparency, quality of life, economic competitiveness, innovation, education and gender equality. It is one of the world's most ethnically diverse and multicultural nations, the product of large-scale immigration. Canada's long and complex relationship with the United States has had a significant impact on its history, economy, and culture. A developed country, Canada has a high nominal per capita income globally and its advanced economy ranks among the largest in the world, relying chiefly upon its abundant natural resources and well-developed international trade networks. Recognized as a middle power, Canada's strong support for multilateralism and internationalism has been closely related to its foreign relations policies of peacekeeping and aid for developing countries. Canada is part of multiple international organizations and forums.
1296
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A6%AC%E0%A7%87%E0%A6%B0%E0%A6%BE
ক্যানবেরা
ক্যানবেরা () অস্ট্রেলিয়ার রাজধানী শহর। প্রশাসনিকভাবে এটি অস্ট্রেলীয় রাজধানী অঞ্চলের উত্তর অংশটি গঠন করেছে। ক্যানবেরা একটি আধুনিক ও দ্রুত প্রসারমান শহর। আর্থ-ভৌগোলিকভাবে শহরটি অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পূর্বভাগে, অস্ট্রেলীয় আল্পস পর্বতমালার পাদদেশে, একটি সমতল কৃষিপ্রধান অঞ্চলে, মোলোংলো নদীর (মারামবিজি নদীর একটি উপনদী) তীরে অবস্থিত। সিডনি শহর থেকে ২৪০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পশ্চিমে ও মেলবোর্ন থেকে ৬৬০ কিলোমিটার উত্তর-পূর্বে অবস্থিত শহরটি অস্ট্রেলিয়ার এই দুই প্রধানতম নগরীর মধ্যবর্তী একটি জায়গায় অবস্থিত। জনসংখ্যার বিচারে এটি অস্ট্রেলিয়ার ৮ম বৃহত্তম শহর ও অস্ট্রেলিয়ার অভ্যন্তরভাগের বৃহত্তম শহর; এখানে প্রায় ৪ লক্ষ লোক বাস করে। ক্যানবেরার গ্রীষ্মকালগুলি উষ্ম ও শীতকালগুলি শীতল প্রকৃতির এবং চারপাশ ঘিরে থাকা উচ্চভূমির তুলনায় এখানে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বেশ কম। শহরটিকে বার্লি গ্রিফিন নামের একটি কৃত্রিম হ্রদের চারপাশ ঘিরে পরিকল্পিতভাবে গড়ে তোলা হয়েছে। মোলোংলো নদীর উপরে বাঁধ ফেলে ১৯৬৩ সালে এই হ্রদটি সৃষ্টি করা হয়। শহরটির আয়তন ও জনসংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। শুধুমাত্র শহরকেন্দ্র ও সংলগ্ন শহরতলীগুলিই মূল পরিকল্পনাকে মেনে চলছে। শহরের চারপাশের উপগ্রহ শহরগুলিতেই মূলত আবাসিক উন্নয়ন হয়েছে; এগুলির মধ্যে আছে ১৯৬২ সালে প্রতিষ্ঠিত ওয়েস্টন ক্রিক, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত বেলকনেন এবং ১৯৭৫ সালে প্রতিষ্ঠিত টাগারানং। ন্যাশনাল ক্যাপিটাল প্ল্যানিং নামক একটি সংস্থা শহরের প্রবৃদ্ধি দেখাশোনার কাজে নিয়োজিত। ক্যানবেরাতে অবস্থিত প্রধান কিছু দর্শনীয় স্থান হল ক্যাপিটাল হিল নামক এলাকায় অবস্থিত নতুন সংসদ ভবন (Parliament House পার্লামেন্ট হাউস, ১৯৮৮ সালে উন্মোচিত)। পুরাতন সংসদ ভবনটিতে ১৯২৭ থেকে ১৯৮৮ পর্যন্ত অধিবেশন বসত, এবং সেটিকে বর্তমানে অস্ট্রেলীয় গণতন্ত্র জাদুঘরে রূপান্তর করা হয়েছে। নতুন সংসদ ভবনের কাছেই অস্ট্রেলিয়ার উচ্চ আদালত ভবন (High Court of Australia হাই কোর্ট অফ অস্ট্রেলিয়া) ও অস্ট্রেলীয় জাতীয় চিত্রশালা (Australian National Gallery অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল গ্যালারি, ১৯৮২) অবস্থিত। চিত্রশালাটিতে অস্ট্রেলীয় ও অন্যান্য দেশের শিল্পীদের প্রায় ১ লক্ষেরও বেশি শিল্পকর্ম সুরক্ষিত আছে। শহরের কেন্দ্রে বার্লি গ্রিফিন হ্রদের ভেতরে ক্যাপটেন কুক মেমোরিয়াল ওয়াটার জেট (Captain Cook Memorial Water Jet, ক্যাপ্টেন কুকের স্মরণিকা ফোয়ারা) অবস্থিত। হ্রদের তীরে ১৯৬০ (১৯৬৮?) সালে প্রতিষ্ঠিত অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় গ্রন্থাগার (National Library of Australia ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ অস্ট্রেলিয়া) এবং জাতীয় রাজধানী প্রদর্শনীকেন্দ্র (National Capital Exhibition) অবস্থিত। ধর্মীয় স্থাপনার মধ্যে ১৮৪০-এর দশকে নির্মিত সন্তু জন দ্য ব্যাপ্টিস্টের গির্জা (Church of Saint John the Baptist চার্চ অফ সেইন্ট জন দ্য ব্যাপ্টিস্ট) দর্শনীয়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য স্থানের মধ্যে আছে অস্ট্রেলীয় জাতীয় যুদ্ধ স্মরণিকা কেন্দ্র (Australian National War Memorial অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল), যেখানে একটি জাদুঘর ও শিল্পকলা প্রদর্শনী কেন্দ্র আছে; রাজকীয় অস্ট্রেলীয় টাকশাল ও অস্ট্রেলিয়া ক্রীড়া ইন্সটিটিউট। ক্যানবেরার প্রধান প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি হল ১৯৪৬ সালে প্রতিষ্ঠিত অস্ট্রেলীয় জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় (Australian National University অস্ট্রেলিয়ান ন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি), ক্যানবেরা সঙ্গীত বিদ্যালয় (Canberra School of Music ক্যানবেরা স্কুল অফ মিউজিক, ১৯৬৫), ক্যানবেরা বিশ্ববিদ্যালয় (University of Canberra ইউনিভার্সিটি অফ ক্যানবেরা, প্রতিষ্ঠাকাল ১৯৯০; প্রাক্তন নাম Canberra College of Advanced Education ক্যানবেরা কলেজ অফ অ্যাডভান্সড এডুকেশন, "ক্যানবেরা উচ্চ শিক্ষা মহাবিদ্যালয়"), অস্ট্রেলীয় প্রতিরক্ষা বাহিনী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র (Australian Defence Force Academ অস্ট্রেলিয়ান ডিফেন্স ফোর্স অ্যাকাডেমি, ১৯৮১), অস্ট্রেলীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি (Australian Academy of Science, অস্ট্রেলিয়ান অ্যাকাডেমি অফ সাইয়েন্স, ১৯৫৪) এবং ১৯৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত অস্ট্রেলীয় মানববিদ্যা অ্যাকাডেমি (Australian Academy of the Humanities অস্ট্রেলিয়ান অ্যাকাডেমি অফ দ্য হিউম্যানিটিস)। এখানে আরও আছে ১৯২৪ সালে প্রতিষ্ঠিত মাউন্ট স্ট্রমলো মানমন্দির (Mount Stromlo Observatory মাউন্ট স্ট্রমলো অবজারভেটরি)। অস্ট্রেলিয়ার বৃহত্তম বৈজ্ঞানিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান কমনওয়েলথ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা সংস্থার (Commonwealth Scientific and Industrial Research Organization, কমনওয়েলথ সাইয়েন্টিফিক অ্যান্ড ইন্ডাসট্রিয়াল রিসার্চ অর্গানাইজেশন) প্রধান কার্যালয় ক্যানবেরাতে অবস্থিত। ক্যানবেরা শহরটি নিকটবর্তী ওডেন-ওয়েস্টন ক্রিক, বেলকনেন এবং কুইনবেইয়ান লোকালয়গুলির জন্য অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে। ক্যানবেরাতে সরকারী প্রশাসনিক কর্মকাণ্ডই প্রধান। ক্যানবেরার সর্বপ্রধান কর্মসংস্থান প্রদানকারী সংস্থা হল অস্ট্রেলীয় সরকার। তবে পর্যটন ও হালকা শিল্পকারখানা খাত ধীরে ধীরে প্রবৃদ্ধিলাভ করছে। ২১শ শতকের শুরুতে এসে শহরটি উচ্চ-প্রযুক্তি যেমন তথ্য প্রযুক্তি, টেলিযোগাযোগ প্রযুক্তি ও জৈবপ্রযুক্তিনির্ভর শিল্পপ্রতিষ্ঠানসমূহের নির্মাণকাজ শুরু করে। ইউরোপীয়রা ১৮২৪ সালে বা তারও আগে প্রথম ক্যানবেরা অঞ্চলটিতে বসতি স্থাপন করে। এখানে তখন মেষপালকদের একটি ক্ষুদ্র বসতি ছিল, যার নাম ছিল "ক্যানবেরি"; নামটি সম্ভবত অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী অধিবাসীদের মুখের এনগুন্নাওয়াল ভাষার একটি শব্দ "কামবেরা" থেকে এসেছে, যার সম্ভাব্য একটি অর্থ হল "সম্মেলন স্থল"। এই নামটিই পরে বিবর্তিত হয়ে ১৮৩৬ সালে "ক্যানবেরা" নামটির উৎপত্তি হয় বলে ধারণা করা হয়। ১৯০১ সালে অস্ট্রেলিয়া কমনওয়েলথ বা জোটরাষ্ট্রের উদ্বোধন হবার পর ১৯০৮ (মতান্তরে ১৯০৯) সালে তৎকালীন নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্যের অন্তর্ভুক্ত ইয়াস-ক্যানবেরা নামের জনবিরল অঞ্চলটিকে অস্ট্রেলিয়ার রাজধানীর অবস্থান হিসেবে নির্বাচন করা হয় এবং অস্ট্রেলীয় রাজধানী অঞ্চলটির সীমানা নির্ধারণ করা হয়। ১৯১১ সালে নিউ সাউথ ওয়েলস অঙ্গরাজ্য সরকার অঞ্চলটিকে কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে হস্তান্তর করে। নতুন শহরটির নকশা প্রণয়ন করার জন্য একটি আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়, যাতে মার্কিন স্থপতি দম্পতি ওয়াল্টার বার্লি গ্রিফিন ও ম্যারিয়ন ম্যাহোনি গ্রিফিন জয়লাভ করেন। তাদের নকশাতে বৃত্ত, ত্রিভুজ ও ষড়ভুজের প্রাধান্য ছিল এবং নকশাটিতে উদ্যান নগরী আন্দোলনের প্রভাবও উল্লেখযোগ্য, যার কারণে শহরে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে সবুজ ও প্রাকৃতিক উদ্ভিজ্জ এলাকা আছে। ১৯১৩ সালে আনুষ্ঠানিকভাবে "ক্যানবেরা" নামের শহরটির নির্মাণকাজ শুরু হয়, কিন্তু ১ম বিশ্বযুদ্ধের কারণে (১৯১৪-১৯১৮) এই কাজ ব্যাহত হয়। কেবল ১৯২৭ সালের ৯ই মে তারিখে এসে অস্ট্রেলিয়ার জাতীয় সংসদকে আনুষ্ঠানিকভাবে মেলবোর্ন থেকে ক্যানবেরা শহরে স্থানান্তর করা হয়। এর আগে ১৯০১ সাল থেকে সংসদ ভবন অস্থায়ীভাবে মেলবোর্ন শহরে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পরে ক্যানবেরার জনসংখ্যা দ্রুত বৃদ্ধি পায়। ২০০৩ সালের শুরুর দিকে দাবানলের কারণে ক্যানবেরা শহর ও এর শহরতলীগুলির ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়। প্রায় ৫০০টি বাসভবন ভস্মীভূত হয় এবং বেশ কয়েকজন লোক মারা যায়। আগুনের কারণে মাউন্ট স্ট্রমলো মানমন্দিরটিরও গুরুতর ক্ষতি হয়। যোগাযোগ আকাশপথে ক্যানবেরা বিমানবন্দর শিক্ষা ক্যানবেরাতে দুইটি প্রধান বিশ্ববিদ্যালয় হল অস্ট্রেলিয়া ন্যাশনাল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ক্যানবেরা বিশ্ববিদ্যালয়। তথ্যসূত্র অস্ট্রেলিয়ার শহর ওশেনিয়ার রাজধানী অস্ট্রেলীয় রাজধানী শহর পরিকল্পিত রাজধানী
https://en.wikipedia.org/wiki/Canberra
Canberra
Canberra ( KAN-bər-ə) is the capital city of Australia. Founded following the federation of the colonies of Australia as the seat of government for the new nation, it is Australia's largest inland city and the eighth-largest Australian city overall. The city is located at the northern end of the Australian Capital Territory at the northern tip of the Australian Alps, the country's highest mountain range. As of June 2023, Canberra's estimated population was 466,566. The area chosen for the capital had been inhabited by Aboriginal Australians for up to 21,000 years, by groups including the Ngunnawal and Ngambri. European settlement commenced in the first half of the 19th century, as evidenced by surviving landmarks such as St John's Anglican Church and Blundells Cottage. On 1 January 1901, federation of the colonies of Australia was achieved. Following a long dispute over whether Sydney or Melbourne should be the national capital, a compromise was reached: the new capital would be built in New South Wales, so long as it was at least 100 mi (160 km) from Sydney. The capital city was founded and formally named as Canberra in 1913. A plan by the American architects Walter Burley Griffin and Marion Mahony Griffin was selected after an international design contest, and construction commenced in 1913. Unusual among Australian cities, it is an entirely planned city. The Griffins' plan featured geometric motifs and was centred on axes aligned with significant topographical landmarks such as Black Mountain, Mount Ainslie, Capital Hill and City Hill. Canberra's mountainous location makes it the only mainland Australian city where snow-capped mountains can be seen in winter, although snow in the city itself is uncommon. As the seat of the Government of Australia, Canberra is home to many important institutions of the federal government, national monuments and museums. These include Parliament House, Government House, the High Court building and the headquarters of numerous government agencies. It is the location of many social and cultural institutions of national significance such as the Australian War Memorial, the Australian National University, the Royal Australian Mint, the Australian Institute of Sport, the National Gallery, the National Museum and the National Library. The city is home to many important institutions of the Australian Defence Force including the Royal Military College Duntroon and the Australian Defence Force Academy. It hosts all foreign embassies in Australia as well as regional headquarters of many international organisations, not-for-profit groups, lobbying groups and professional associations. Canberra has been ranked among the world's best cities to live in and visit. Although the Commonwealth Government remains the largest single employer in Canberra, it is no longer the majority employer. Other major industries have developed in the city, including in health care, professional services, education and training, retail, accommodation and food, and construction. Compared to the national averages, the unemployment rate is lower and the average income higher; tertiary education levels are higher, while the population is younger. At the 2016 Census, 32% of Canberra's inhabitants were reported as having been born overseas. Canberra's design is influenced by the garden city movement and incorporates significant areas of natural vegetation. Its design can be viewed from its highest point at the Telstra Tower and the summit of Mount Ainslie. Other notable features include the National Arboretum, born out of the 2003 Canberra bushfires, and Lake Burley Griffin, named for Walter Burley Griffin. Highlights in the annual calendar of cultural events include Floriade, the largest flower festival in the Southern Hemisphere, the Enlighten Festival, Skyfire, the National Multicultural Festival and Summernats. Canberra's main sporting venues are Canberra Stadium and Manuka Oval. The city is served with domestic and international flights at Canberra Airport, while interstate train and coach services depart from Canberra railway station and the Jolimont Centre respectively. City Interchange and Alinga Street station form the main hub of Canberra's bus and light rail transport network.
1297
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%A8
কার্বন
কার্বন বা অঙ্গারক (ল্যাটিন ভাষায়ঃ কার্বো "কয়লা")(রাসায়নিক সংকেত C, পারমাণবিক সংখ্যা ৬) একটি মৌলিক পদার্থ। এটি একটি অধাতু এবং যদি চারটি মুক্ত ইলেক্ট্রন পায় তবে যা টেট্রাভেলেন্ট বৈশিষ্ট্যের কারণে চারটি সমযোজী রাসায়নিক বন্ধন গঠন করতে সক্ষম। পর্যায় সারণীতে এর অবস্থান গ্রুপ ১৪তে ও এটি একটি পি-ব্লক মৌল এবং C ও C প্রকৃতিতে এটি দুইটি আইসোটোপ স্থায়ী রুপে মুক্ত অবস্থায় পাওয়া যায়। কিন্তু অস্থায়ী C শুধুমাত্র রেডিওনিক্লিড রুপে পাওয়া যায়। এটি ক্ষয়িষ্ণু হওয়ায়, যার অর্ধআয়ু (হাফ-লাইফ) প্রায় ৫,৭৩০ বছর। এটি পৃথিবীর জীবজগতের প্রধান গাঠনিক ও প্রাচীনতম মৌল উপাদানগুলির অন্যতম। ভূত্বকের প্রাচুর্যতার দিক দিয়ে এটি ১৫তম অবস্থানে রয়েছে, কিন্তু ভরের দিক দিয়ে বিবেচনা করলে হাইড্রোজেন, হিলিয়াম, এবং অক্সিজেন-এর পরে চতুর্থতম এর স্থান। আবিষ্কারের ইতিহাস কার্বন কবে আবিষ্কৃত হয়েছিল তা সঠিকভাবে বলা সম্ভব নয়। কারণ আগুন আবিষ্কারের আগে থেকেই মানুষ কার্বনের সাথে পরিচিত ছিল। বজ্রাঘাতের ফলে পুড়ে যাওয়া কাঠের মাধ্যমেই মানুষ প্রথম কার্বনের সাথে পরিচিত হয়। আগুন আবিষ্কারের পর কার্বন হয় মানুষের নিত্যসঙ্গী। কারণ এটি অতিমাত্রায় দাহ্য একটি বস্তু। কার্বন পদার্থটির সাথে পরিচিত থাকলেও এটি যে একটি মৌলিক পদার্থ তা মানুষ বেশিদিন আগে জানতে পারেনি। এমনকি কার্বন নামটির ইতিহাস বেশি প্রাচীন নয়। ১৭৮৯ সালে এন্টনি ল্যাভয়সিয়ে কর্তৃক সংকলিত মৌলিক পদার্থের তালিকায় কার্বন উপস্থিত ছিল। মূলত ল্যাভয়সিয়েই প্রথম ব্যক্তি যিনি প্রমাণ করেছিলেন কার্বন একটি মৌলিক পদার্থ। কয়লা ও অন্যান্য যৌগের দহন পরীক্ষা করে তিনি এই প্রমাণ পেয়েছিলেন। প্রকৃতিতে কার্বনের দুইটি বহুরুপ রয়েছে। একটি হীরক এবং অন্যটি গ্রাফাইট। অনেক আগে থেকেই মানুষ এ পদার্থ দুটিকে চিনতো। এমনকি উচ্চ তাপমাত্রায় হীরাকে দহন করালে যে অবশেষ হিসেবে কিছু পাওয়া যায়না তাও মানুষের জানা ছিল। কিন্তু এই পদার্থ দুটিকে সম্পূর্ণ ভিন্ন পদার্থ হিসেবে মনে করা হতো। কার্বন ডাই অক্সাইড আবিষ্কারের পর এই সমস্যার সমাধান হয়। ল্যাভয়সিয়ে দেখেন যে, হীরক এবং কাঠকয়লা দুটির দহনেই কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়। এ থেকে সিদ্ধান্ত নেয়া গিয়েছিল যে এরা অভিন্ন পদার্থ। ১৭৮৭ খ্রিস্টাব্দে Methods of Chemical Nomenclature নামক গ্রন্থে (ল্যাভয়সিয়ে, এল. গুইটন ডি. মারভিউ, সি. বারথোলেট এবং এ. ফোউরক্রই কর্তৃক লিখিত) প্রথম কার্বনেয়াম (কার্বন) নামটির উল্লেখ পাওয়া যায়। ল্যাটিন নাম তথা কার্বনেয়াম আবার সংস্কৃত ভাষা থেকে এসেছে। সংস্কৃত ভাষায় ক্রা শব্দের অর্থ ফোটা। ১৮২৪ খ্রিস্টাব্দে মৌলটির নাম কার্বন দেয়া হয়েছিল। ১৭৯৭ খ্রিস্টাব্দে বিজ্ঞানী এস. টেন্যান্ট আবিষ্কার করেন, সম পরিমাণ হীরক ও গ্রাফাইটের দহনে সমআয়তন কার্বন ডাই অক্সাইড উৎপন্ন হয়। অবশেষে ১৭৯৯ খ্রিস্টাব্দে এল. গুইটন ডি. মারভিউ নিশ্চিতভাবে প্রমাণ করেন যে হীরক, গ্রাফাইট এবং কোকের একমাত্র উপাদান হচ্ছে কার্বন। এর বিশ বছর পর তিনি সতর্কতার সাথে উত্তপ্ত করে হীরককে গ্রাফাইট এবং গ্রাফাইটকে কার্বন ডাই অক্সাইডে পরিণত করতে সমর্থ হন। কিন্তু গ্রাফাইট থেকে হীরক তৈরির মত প্রযুক্তি তখনও ছিলনা। অবশেষে ১৯৫৫ সালে ব্রিটিশ বিজ্ঞানীদের একটি দল ৩০০০° সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা এবং ১০৯ প্যাসকেল চাপে গ্রাফাইট থেকে হীরক সংশ্লেষণ করতে সক্ষম হন। এর কিছুদিন পর সোভিয়েত ইউনিয়নে কার্বন নামে আরেকটি পদার্থ তৈরি করা হয় যাকে কার্বনের তৃতীয় বহুরুপ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই পদার্থের ক্ষেত্রে কার্বনের পরমাণুগুলো একটির সাথে আরেকটি সংযুক্ত হয়ে লম্বা শিকল তৈরি করে। এটি দেখতে অনেকটা ভূসিকালির মত। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ আরও দেখুন ব্যক্তি এন্টনি ল্যাভয়সিয়ে এল. গুইটন ডি. মারভিউ সি. বারথোলেট এ. ফোউরক্রোই এস. টেন্যান্ট অন্যান্য হীরক গ্রাফাইট কয়লা জৈব যৌগ মৌলিক পদার্থ মূল বিষয়ের নিবন্ধ কার্বন বিজারক
https://en.wikipedia.org/wiki/Carbon
Carbon
Carbon (from Latin carbo 'coal') is a chemical element; it has symbol C and atomic number 6. It is nonmetallic and tetravalent—meaning that its atoms are able to form up to four covalent bonds due to its valence shell exhibiting 4 electrons. It belongs to group 14 of the periodic table. Carbon makes up about 0.025 percent of Earth's crust. Three isotopes occur naturally, 12C and 13C being stable, while 14C is a radionuclide, decaying with a half-life of 5,700 years. Carbon is one of the few elements known since antiquity. Carbon is the 15th most abundant element in the Earth's crust, and the fourth most abundant element in the universe by mass after hydrogen, helium, and oxygen. Carbon's abundance, its unique diversity of organic compounds, and its unusual ability to form polymers at the temperatures commonly encountered on Earth, enables this element to serve as a common element of all known life. It is the second most abundant element in the human body by mass (about 18.5%) after oxygen. The atoms of carbon can bond together in diverse ways, resulting in various allotropes of carbon. Well-known allotropes include graphite, diamond, amorphous carbon, and fullerenes. The physical properties of carbon vary widely with the allotropic form. For example, graphite is opaque and black, while diamond is highly transparent. Graphite is soft enough to form a streak on paper (hence its name, from the Greek verb "γράφειν" which means "to write"), while diamond is the hardest naturally occurring material known. Graphite is a good electrical conductor while diamond has a low electrical conductivity. Under normal conditions, diamond, carbon nanotubes, and graphene have the highest thermal conductivities of all known materials. All carbon allotropes are solids under normal conditions, with graphite being the most thermodynamically stable form at standard temperature and pressure. They are chemically resistant and require high temperature to react even with oxygen. The most common oxidation state of carbon in inorganic compounds is +4, while +2 is found in carbon monoxide and transition metal carbonyl complexes. The largest sources of inorganic carbon are limestones, dolomites and carbon dioxide, but significant quantities occur in organic deposits of coal, peat, oil, and methane clathrates. Carbon forms a vast number of compounds, with about two hundred million having been described and indexed; and yet that number is but a fraction of the number of theoretically possible compounds under standard conditions.
1299
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A5%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%20%E0%A6%AE%E0%A6%A3%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%B2%E0%A7%80
ক্যাথলিক মণ্ডলী
ক্যাথলিক গির্জা সদস্যসংখ্যা অনুযায়ী খ্রীষ্টধর্মের বৃহত্তম মণ্ডলী বা শাখা। ২০১৬ সালের হিসাব অনুযায়ী সারা বিশ্বে প্রায় ১৩০ কোটি লোক রোমান ক্যাথলিক গির্জা দীক্ষিত বলে পরিগণিত হন। রোমীয় ক্যাথলিক গির্জা "বিশ্বের প্রাচীনতম নিরবচ্ছিন্নভাবে অদ্যাবধি সচল আন্তর্জাতিক সংস্থা" হিসেবে পরিচিত। নাসরতীয় যীশু ও তাঁর বারোজন প্রেরিত কর্তৃক প্রবর্তিত প্রথম ও অবিভক্ত খ্রীষ্টান সম্প্রদায় থেকে শুরু করে নিরবচ্ছিন্ন প্রেরিতীয় উত্তরাধিকারের মাধ্যমে এই মণ্ডলী এখন পর্যন্ত টিকে আছে। মণ্ডলীটির সর্বোচ্চ নেতা হলেন রোমের বিশপ, যাঁকে পোপ উপাধি দেওয়া হয়। মণ্ডলীর কেন্দ্রীয় প্রশাসন, যার নাম “পবিত্র পোপরাজ্য”, ইতালির রোম শহরের অভ্যন্তরীণ একটি স্বতন্ত্র নগররাষ্ট্র ভ্যাটিকান সিটিতে অবস্থিত। ক্যাথলিক শব্দটি গ্রীক শব্দ কাথোলিকোস () থেকে এসেছে, যার অর্থ সর্বজনীন। খ্রীষ্টধর্মের ইতিহাসের প্রথম দিকে এই অর্থে ব্যবহৃত হলেও ৪র্থ শতকে এসে ক্যাথলিক বলতে রোমের পোপের অনুসারীদের বোঝানো শুরু হয়। নিকীয় মতবাদটি ক্যাথলিক ভিত্তি। ক্যাথলিক মণ্ডলী দাবি করে যে এটি যীশুখ্রীষ্ট কর্তৃক প্রতিষ্ঠিত অদ্বিতীয়, পবিত্র, সর্বজনীন (ক্যাথলিক) ও আদিপ্রচারকদের (প্রেরিতগণ) গির্জা। এটি আরও দীক্ষা দেয় যে, ক্যাথলিক বিশপরা হলেন যীশুখ্রীষ্টের শিষ্যদের উত্তরসূরী প্রচারক। তারা আরও বলেন যে পোপ হলেন প্রেরিত পৌলের উত্তরসূরী এবং যীশুখ্রীষ্ট নিজে সাধু পৌলকে শ্রেষ্ঠত্ব অর্পণ করেছিলেন। ক্যাথলিক গির্জা দাবি করে যে এটি আদি খ্রীষ্টধর্মীয় বিশ্বাস অনুযায়ী কাজ করে, তাদের বিশ্বাস অভ্রান্ত এবং পবিত্র ঐতিহ্যের মাধ্যমে এটি পরম্পরাক্রমে অদ্যাবধি চলে এসেছে। ক্যাথলিক মণ্ডলীর সাতটি প্রধান অনুষ্ঠান আছে, যাদের মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণটি হল যীশুর নিস্তারপর্বের ভোজ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠান। বহু মানুষের উপস্থিতিতে স্ত্রোত্রপাঠের মাধ্যমে এটি সম্পন্ন করা হয়। একজন পাদ্রি মদ ও রুটি উৎসর্গ করেন, যেগুলি যথাক্রমে যীশুর রক্ত ও দেহের প্রতিনিধিত্বমূলক। ক্যাথলিক মণ্ডলী পশ্চিমা সভ্যতার ইতিহাস ও বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। এটি পশ্চিমা দর্শন, সংস্কৃতি, বিজ্ঞান ও শিল্পকলার উপর প্রভাব ফেলেছে। ১০৫৪ সালে রোমের পোপের কর্তৃত্ব নিয়ে বিতর্কের ফলে প্রাচ্য অর্থোডক্স মণ্ডলীটি আলাদা হয়ে যায়। ১৬শ শতকে খ্রীষ্টধর্ম সংস্কার আন্দোলনের ফলশ্রুতিতে প্রোটেস্ট্যান্ট খ্রীষ্টানেরা ক্যাথলিক মণ্ডলী পরিত্যাগ করে। ২০শ শতাব্দী থেকে বেশিরভাগ ক্যাথলিক খ্রীষ্টান দক্ষিণ গোলার্ধে বাস করছে, যার কারণ ইউরোপে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদের উত্থান এবং মধ্যপ্রাচ্যে খ্রীষ্টানদের উৎপীড়ন বৃদ্ধি। ২০শ শতাব্দীর শেষদিকে ও ২১শ শতাব্দীর প্রারম্ভে এসে ক্যাথলিক মণ্ডলী যৌনতা সংক্রান্ত মতবাদ, নারী যাজক নিয়োগে অসম্মতি এবং ধর্মীয় নেতাদের যৌন অসদাচরণের ব্যাপারে প্রতিক্রিয়া ইত্যাদি নিয়ে নিন্দিত হয়েছে। পাদটীকা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Vatican.va  – official website of the Holy See News.va   – official news website Vatican YouTube  – official YouTube channel পশ্চিমা সংস্কৃতি
https://en.wikipedia.org/wiki/Catholic_Church
Catholic Church
The Catholic Church, also known as the Roman Catholic Church, is the largest Christian church, with 1.28 to 1.39 billion baptized Catholics worldwide as of 2024. It is among the world's oldest and largest international institutions and has played a prominent role in the history and development of Western civilization. The church consists of 24 sui iuris churches, including the Latin Church and 23 Eastern Catholic Churches, which comprise almost 3,500 dioceses and eparchies located around the world. The pope, who is the bishop of Rome, is the chief pastor of the church. The Diocese of Rome, known as the Holy See, is the central governing authority of the church. The administrative body of the Holy See, the Roman Curia, has its principal offices in Vatican City, a small independent city-state and enclave within the Italian capital city of Rome, of which the pope is head of state. The core beliefs of Catholicism are found in the Nicene Creed. The Catholic Church teaches that it is the one, holy, catholic and apostolic church founded by Jesus Christ in his Great Commission, that its bishops are the successors of Christ's apostles, and that the pope is the successor to Saint Peter, upon whom primacy was conferred by Jesus Christ. It maintains that it practises the original Christian faith taught by the apostles, preserving the faith infallibly through scripture and sacred tradition as authentically interpreted through the magisterium of the church. The Roman Rite and others of the Latin Church, the Eastern Catholic liturgies, and institutes such as mendicant orders, enclosed monastic orders and third orders reflect a variety of theological and spiritual emphases in the church. Of its seven sacraments, the Eucharist is the principal one, celebrated liturgically in the Mass. The church teaches that through consecration by a priest, the sacrificial bread and wine become the body and blood of Christ. The Virgin Mary is venerated as the Perpetual Virgin, Mother of God, and Queen of Heaven; she is honoured in dogmas and devotions. Catholic social teaching emphasizes voluntary support for the sick, the poor, and the afflicted through the corporal and spiritual works of mercy. The Catholic Church operates tens of thousands of Catholic schools, universities and colleges, hospitals, and orphanages around the world, and is the largest non-government provider of education and health care in the world. Among its other social services are numerous charitable and humanitarian organizations. The Catholic Church has profoundly influenced Western philosophy, culture, art, literature, music, law, and science. Catholics live all over the world through missions, immigration, diaspora, and conversions. Since the 20th century, the majority have resided in the Global South, partially due to secularization in Europe and North America. The Catholic Church shared communion with the Eastern Orthodox Church until the East–West Schism in 1054, disputing particularly the authority of the pope. Before the Council of Ephesus in AD 431, the Church of the East also shared in this communion, as did the Oriental Orthodox Churches before the Council of Chalcedon in AD 451; all separated primarily over differences in Christology. The Eastern Catholic Churches, who have a combined membership of approximately 18 million, represent a body of Eastern Christians who returned or remained in communion with the pope during or following these schisms for a variety of historical circumstances. In the 16th century, the Reformation led to the formation of separate, Protestant groups. From the late 20th century, the Catholic Church has been criticized for its teachings on sexuality, its doctrine against ordaining women, and its handling of sexual abuse cases involving clergy.
1300
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9A%E0%A6%BE%E0%A6%A6
চাদ
চাদ (, ; , ), সরকারি নাম চাদ প্রজাতন্ত্র,(, ) মধ্য আফ্রিকার একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর উত্তরে লিবিয়া, পূর্বে সুদান, দক্ষিণে মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, দক্ষিণ-পশ্চিমে ক্যামেরুন ও নাইজেরিয়া, এবং পশ্চিমে নাইজার। সমুদ্র থেকে দূরে অবস্থিত বলে এবং মরু জলবায়ুর কারণে চাদকে "আফ্রিকার মৃত হৃদয়" বলেও মাঝে মাঝে অভিহিত করা হয়। চাদকে বাংলা ভাষা রীতিগত পরিবর্তনের কারণে শাদ বলেও অভিহিত করা হয়। চাদকে তিনটি ভৌগোলিক অঞ্চলে ভাগ করা যায়: উত্তরের সাহারা মরুভূমি অঞ্চল, মধ্যভাগের ঊষর সহিলীয় বেষ্টনী, এবং দক্ষিণের অপেক্ষাকৃত উর্বর সুদানীয় সাভানা তৃণভূমি অঞ্চল। চাদ হ্রদ দেশটির বৃহত্তম এবং আফ্রিকার দ্বিতীয় বৃহত্তম জলাশয়। এই হ্রদের নামের দেশটির চাদ নামকরণ করা হয়েছে। সাহারা অঞ্চলে অবস্থিত তিবেস্তি পর্বতমালার এমি কৌসি চাদের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ। রাজধানী এনজামেনা দেশটির বৃহত্তম শহর। চাদে ২০০ বেশি ধরনের জাতিগত ও ভাষাভিত্তিক গোষ্ঠীর বাস। ফরাসি ও আরবি এখানকার সরকারি ভাষা। ইসলাম ও খ্রিস্টধর্ম এখানে সবচেয়ে বেশি প্রচলিত। ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব ৭ম সহস্রাব্দের শুরুতে চাদ উপত্যকাতে বড় আকারের মনুষ্য বসতি স্থাপিত হয়। খ্রিস্টপূর্ব ১ম সহস্রাব্দ নাগাদ চাদের সহিলীয় অঞ্চলটিতে বহু রাজ্য ও সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন ঘটে; চাদের মধ্য দিয়ে চলে যাওয়া আন্তঃসাহারান বাণিজ্যপথটি নিয়ন্ত্রণ করাই ছিল এগুলির লক্ষ্য। ১৯২০ সাল নাগাদ ফ্রান্স দেশটি দখল করে এবং এটিকে ফরাসি বিষুবীয় আফ্রিকার অংশীভূত করে। ১৯৬০ সালে ফ্রঁসোয়া তোম্বালবাইয়ের নেতৃত্বে চাদ স্বাধীনতা অর্জন করে। কিন্তু মুসলিম-অধ্যুষিত উত্তরাঞ্চল তোম্বালবাইয়ের নীতির বিরোধিতা করে এবং ১৯৬৫ সালে দেশটিতে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়। ১৯৭৯ সালে বিপ্লবীরা রাজধানী দখল করে এবং দক্ষিণের আধিপত্যের অবসান ঘটায়। কিন্তু বিপ্লবী নেতারা অন্তর্কোন্দলে জড়িয়ে পড়ে; শেষ পর্যন্ত ইসেনে আব্রে তার প্রতিদ্বন্দ্বীদের পরাজিত করেন। ১৯৯০ সালে তারই সামরিক জেনারেল ইদ্রিস দেবি তাকে ক্ষমতাচ্যুত করেন। সাম্প্রতিক সময়ে সুদানের দারফুর সংকট সীমানা পেরিয়ে চাদেও সংক্রমিত হয়েছে এবং যুদ্ধ শুরু হয়ে দেশটিতে একটি অস্থিতিশীল অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। চাদে অনেকগুলি রাজনৈতিক দল থাকলেও রাষ্ট্রপতি দেবি ও তার রাজনৈতিক দল পেট্রিয়টিক স্যালভেশন মুভমেন্ট ক্ষমতা কুক্ষিগত করে রেখেছেন। রাজনৈতিক সহিংসতা ও অভ্যুত্থান বা কু-এর ঘটনা চাদের রাজনীতিকে জর্জরিত করে রেখেছে। এটি বিশ্বের সবচেয়ে দরিদ্র ও দুর্নীতিগ্রস্ত দেশগুলির একটি। বেশির চাদীয় নাগরিক দিনমজুরি ও কৃষিকাজ করেন। ঐতিহ্যবাহী তুলা শিল্প একদা দেশের প্রধান রপ্তানিকারী শিল্প হলেও ২০০৩ থেকে খনিজ তেল দেশটির রপ্তানি আয়ের প্রধান উৎস। রাজনীতি প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল অর্থনীতি জনসংখ্যা চাদ এর আয়তনের সাথে তাল মিলিয়ে এর জনসংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে ২০১৩ অনুসারে চাদ এর জনসংখ্যা দাঁড়িয়েছে ১৩,৬৭০,০৮৪ জন ভাষাসমূহ চাদ এর অন্যতম সরকারি ভাষা আরবি ও ফরাসি। কিন্তু ১০০টি ভাষা এবং উপভাষা ব্যবহৃত হয়। ভ্রাম্যমাণ আরব ব্যবসায়ী ও স্থানীয় সম্প্রদায়ের বসতি স্থাপন বণিকদের চরিত্রে অভিনয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা কারণে চাদীয় আরবি একটি রীতি হয়ে গেছে। চাদ ধর্ম চাদ ধর্মীয়ভাবে বিচিত্র দেশ। ১৯৯৩ সালের আদমশুমারী দেখা গেছে যে ৫৪% চাদীয় লোক (একটি সংরক্ষিত আসনের অনুযায়ী এগুলোর মধ্যে প্রতিবেদন ৪৮%, সুন্নি হতে নামেমাত্র ২১% শিয়া, ৪% আহমাদী এবং ২৩% শুধুমাত্র মুসলিম) মুসলিম ছিল। যখন ৩% কোন ধর্মের মুক্তকণ্ঠে করা হয়নি চাদীয় লোক এর মোটামুটিভাবে ২০%, রোমান ক্যাথলিক, ১৪% প্রোটেস্ট্যান্ট, ১০% সর্বপ্রাণবাদী হয়। এই ধর্মীয় ঐতিহ্যের মধ্যে কেউই একশিলা হয়। সর্বপ্রাণবাদ পূর্বপুরুষ এবং স্থান ভিত্তিক ধর্মের যার অভিব্যক্তি খুব নির্দিষ্টভাবে হয় বিভিন্ন অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। ইসলাম বিচিত্র উপায়ে প্রকাশ করা হয়; উদাহরণস্বরূপ, উল্লিখিত মুসলিম চাদীয় লোক আগের ৫৫% সংরক্ষিত আসনের রিপোর্ট অনুযায়ী সুফি অন্তর্গত। খ্রীষ্টধর্ম ফরাসি ও আমেরিকান মিশনারি সঙ্গে চাদ আগত; চাদীয় লোক ইসলামের সাথে হিসেবে, এটা প্রাক খৃস্টান ধর্মীয় বিশ্বাসের দিক সমগোত্রীয়। মুসলমানদের উত্তর ও পূর্ব চাদ মধ্যে মূলত কেন্দ্রীভূত এবং আধ্যাত্ববাদ এবং খ্রিস্টান দক্ষিণ চাদ প্রাথমিকভাবে বাস। সংবিধান একটি ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্রের জন্য উপলব্ধ করা হয় এবং ধর্মীয় স্বাধীনতা নিশ্চয়তা; বিভিন্ন ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সাধারণত সমস্যা ছাড়াই সহ-বিদ্যমান। দেশে মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ রহস্যময় ইসলাম (সুফিবাদ) একটি মধ্যপন্থী শাখার অনুগামী হয়। তার সবচেয়ে সাধারণ অভিব্যক্তি Tijaniyah, যা স্থানীয় আফ্রিকান ধর্মীয় উপাদানের অন্তর্ভুক্ত Chadian মুসলমানদের 35% দ্বারা অনুসরণ একটি আদেশ হয়। দেশের মুসলমানদের একটি ছোট সংখ্যালঘু আরও মৌলবাদী চর্চা, যা, কিছু ক্ষেত্রে, সৌদি ওরিয়েন্টেড সালাফী আন্দোলন সাথে যুক্ত হতে পারে ধরে রাখুন। [60] রোমান ক্যাথলিক দেশের সর্ববৃহত খ্রিস্টান আখ্যা প্রতিনিধিত্ব করে। নাইজেরিয়া-ভিত্তিক "উইনার্স চ্যাপেল" সমেত অধিকাংশ প্রোটেস্ট্যান্ট, বিভিন্ন ধর্মপ্রচারক খ্রিস্টান গোষ্ঠীর সাথে জড়িত নই। বাহাই এবং যিহোবার সাক্ষিদের ধর্মীয় সম্প্রদায়ের সদস্যরা দেশের মধ্যে উপস্থিত থাকে। উভয় ধর্মের ১৯৬০ সালে স্বাধীনতার পর চালু হয় এবং এর ফলে দেশে "নতুন" ধর্মের বলে মনে করা হয়। চাদ উভয় খ্রিস্টান ও ইসলামী দলের প্রতিনিধিত্বমূলক বিদেশী মিশনারীরা হোম। ভ্রাম্যমাণ মুসলিম প্রচারক, সুদান, সৌদি আরব, এবং পাকিস্তান থেকে প্রাথমিকভাবে, এছাড়াও এ যান। সৌদি তহবিল সাধারণত সামাজিক এবং শিক্ষা সংক্রান্ত প্রকল্প এবং ব্যাপক মসজিদ নির্মাণ সমর্থন করে। [60] দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারী সরকারী ওয়েবসাইট Official presidency site Chad Embassy—Washington DC রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Chad from UCB Libraries GovPubs আফ্রিকার রাষ্ট্র ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র ১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল আরবিভাষী দেশ ও অঞ্চল স্থলবেষ্টিত দেশ স্বল্পোন্নত দেশ প্রজাতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Chad
Chad
Chad, officially the Republic of Chad, is a landlocked country located at the crossroads of North and Central Africa. It is bordered by Libya to the north, Sudan to the east, the Central African Republic to the south, Cameroon to the southwest, Nigeria to the southwest (at Lake Chad), and Niger to the west. Chad has a population of 16 million, of which 1.6 million live in the capital and largest city of N'Djamena. With a total area of around 1,300,000 km2 (500,000 sq mi), Chad is the fifth-largest country in Africa and the twentieth largest nation by area in the world. Chad has several regions: the Sahara desert in the north, an arid zone in the centre known as the Sahel and a more fertile Sudanian Savanna zone in the south. Lake Chad, after which the country is named, is the second-largest wetland in Africa. Chad's official languages are Arabic and French. It is home to over 200 different ethnic and linguistic groups. Islam (55.1%) and Christianity (41.1%) are the main religions practiced in Chad. Beginning in the 7th millennium BC, human populations moved into the Chadian basin in great numbers. By the end of the 1st millennium AD, a series of states and empires had risen and fallen in Chad's Sahelian strip, each focused on controlling the trans-Saharan trade routes that passed through the region. France conquered the territory by 1920 and incorporated it as part of French Equatorial Africa. In 1960, Chad obtained independence under the leadership of François Tombalbaye. Resentment towards his policies in the Muslim north culminated in the eruption of a long-lasting civil war in 1965. In 1979 the rebels conquered the capital and put an end to the South's hegemony. The rebel commanders then fought amongst themselves until Hissène Habré defeated his rivals. The Chadian–Libyan conflict erupted in 1978 by the Libyan invasion which stopped in 1987 with a French military intervention (Operation Épervier). Hissène Habré was overthrown in turn in 1990 by his general Idriss Déby. With French support, a modernization of the Chad National Army was initiated in 1991. From 2003, the Darfur crisis in Sudan spilt over the border and destabilised the nation. Already poor, the nation and people struggled to accommodate the hundreds of thousands of Sudanese refugees who live in and around camps in eastern Chad. While many political parties participated in Chad's legislature, the National Assembly, power laid firmly in the hands of the Patriotic Salvation Movement during the presidency of Idriss Déby, whose rule was described as authoritarian. After President Déby was killed by FACT rebels in April 2021, the Transitional Military Council led by his son Mahamat Déby assumed control of the government and dissolved the Assembly. Chad remains plagued by political violence and recurrent attempted coups d'état. Chad ranks the 2nd lowest in the Human Development Index, with 0.394 in 2021 placed 190th, and a least developed country facing the effects of being one of the poorest and most corrupt countries in the world. Most of its inhabitants live in poverty as subsistence herders and farmers. Since 2003 crude oil has become the country's primary source of export earnings, superseding the traditional cotton industry. Chad has a poor human rights record, with frequent abuses such as arbitrary imprisonment, extrajudicial killings, and limits on civil liberties by both security forces and armed militias.
1302
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9A%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%BF
চিলি
চিলি (স্পেনীয় ভাষায়: Chile চিলে) দক্ষিণ আমেরিকার দক্ষিণ-পশ্চিম অংশের একটি দেশ। দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূল ঘেঁষে একটি লম্বা ফিতার মত প্রসারিত একটি ভূখণ্ড। উত্তর-দক্ষিণে চিলির দৈর্ঘ্য প্রায় ৪,২৭০ কিলোমিটার, কিন্তু এর গড় বিস্তার ১৮০ কিলোমিটারেরও কম। উত্তরের ঊষর মরুভূমি থেকে শুরু করে দক্ষিণের ঝঞ্ঝাপীড়িত হিমবাহ ও ফিয়র্ডসমূহ চিলির ভূ-দৃশ্যাবলির বৈচিত্র‌্যের স্বাক্ষর বহন করছে। দেশটির মধ্যভাগে একটি উর্বর উপত্যকা অবস্থিত। পূর্বে আন্দেস পর্বতমালা আর্জেন্টিনার সাথে সীমান্ত তৈরি করেছে। চিলির রাজধানী ও বৃহত্তম শহর সান্তিয়াগো মধ্যভাগের উপত্যকায় অবস্থিত। চিলির অধিকাংশ জনগণ দেশের মধ্যাঞ্চলের উর্বর কেন্দ্রীয় উপত্যকায় বাস করেন। বেশির ভাগ লোক স্পেনীয় ও আদিবাসী আমেরিকানদের মিশ্র জাতির লোক। রোমান ক্যাথলিক ধর্ম এখানকার প্রধান ধর্ম। স্পেনীয় ভাষা এখানকার সরকারি ভাষা। চিলি দক্ষিণ আমেরিকার একটি নেতৃস্থানীয় শিল্পোন্নত দেশ। এর অর্থনীতি খনন শিল্প ও কৃষিভিত্তিক। চিলি বিশ্বের বৃহত্তম তামা উৎপাদক ও রপ্তানিকারক। এছাড়াও দেশটি ফলমূল ও শাকসবজি রপ্তানি করে। চিলির ওয়াইন অনেক দেশে জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। চিলি ১৬শ শতক থেকে স্পেনের একটি উপনিবেশ ছিল। ১৯শ শতকের শুরুর দিকে এটি স্বাধীনতা লাভ করে। গোটা ১৯শ শতক ধরে রপ্তানির মাধ্যমে এটি সমৃদ্ধি লাভ করে, কিন্তু এতে মূলত জমিদার উচ্চ শ্রেণীর লোকেরাই লাভবান হন। এখনও চিলিতে ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য প্রকট। ১৯৭৩ সাল পর্যন্ত চিলিতে কোন সামরিক কু (coup) ঘটেনি, যা ছিল লাতিন আমেরিকার অন্যান্য দেশগুলির তুলনায় ব্যতিক্রম। ১৯৭৩ সালে এক সামরিক জান্তা ক্ষমতা দখল করে এবং ১৯৮৯ সালে গণতান্ত্রিক নির্বাচনের আগ পর্যন্ত চিলি শাসন করে। ২১শ শতকের শুরুতে এসেও চিলি সামরিক শাসনের দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব কাটিয়ে ওঠার প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। তথ্যসূত্র আরও দেখুন বাংলাদেশ মাগী বহিঃসংযোগ ThisisChile.cl - Official Chile website - English and Spanish version চিলি জি১৫ রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র স্পেনীয় ভাষী রাষ্ট্র ও অঞ্চল দক্ষিণ আমেরিকার রাষ্ট্র ওইসিডি সদস্য আন্তঃমহাদেশীয় রাষ্ট্র প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ প্রজাতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Chile
Chile
Chile, officially the Republic of Chile, is a country in western South America. It is the southernmost country in the world and the closest to Antarctica, stretching along a narrow strip of land between the Andes Mountains and the Pacific Ocean. Chile had a population of 17.5 million as of the latest census in 2017 and has a territorial area of 756,102 square kilometers (291,933 sq mi), sharing borders with Peru to the north, Bolivia to the northeast, Argentina to the east, and the Drake Passage to the south. The country also controls several Pacific islands, including Juan Fernández, Isla Salas y Gómez, Desventuradas, and Easter Island, and claims about 1,250,000 square kilometers (480,000 sq mi) of Antarctica as the Chilean Antarctic Territory. The capital and largest city of Chile is Santiago, and the national language is Spanish. Spain conquered and colonized the region in the mid-16th century, replacing Inca rule, but failed to conquer the independent Mapuche people who inhabited what is now south-central Chile. Chile emerged as a relatively stable authoritarian republic in the 1830s after their 1818 declaration of independence from Spain. During the 19th century, Chile experienced significant economic and territorial growth, putting an end to Mapuche resistance in the 1880s and gaining its current northern territory in the War of the Pacific (1879–83) by defeating Peru and Bolivia. In the 20th century, up until the 1970s, Chile underwent a process of democratization and experienced rapid population growth and urbanization, while relying increasingly on exports from copper mining to support its economy. During the 1960s and 1970s, the country was marked by severe left-right political polarization and turmoil, which culminated in the 1973 Chilean coup d'état that overthrew Salvador Allende's democratically elected left-wing government. This was followed by a 16-year right-wing military dictatorship under Augusto Pinochet, which resulted in more than 3,000 deaths or disappearances. The regime ended in 1990, following a referendum in 1988, and was succeeded by a center-left coalition, which ruled until 2010. Chile has a high-income economy and is one of the most economically and socially stable nations in South America, leading Latin America in competitiveness, per capita income, globalization, peace, and economic freedom. Chile also performs well in the region in terms of sustainability of the state and democratic development, and boasts the second lowest homicide rate in the Americas, following only Canada. Chile is a founding member of the United Nations, the Community of Latin American and Caribbean States (CELAC), and the Pacific Alliance, and joined the OECD in 2010.
1304
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A7%8B%E0%A6%AE%E0%A7%8B%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%AE
ক্রোমোজোম
ক্রোমোজোম হল একটি দীর্ঘ ডিএনএ(Dioxy Ribonucleic Acid)অণু যাতে একটি জীবের জিনগত উপাদানের একটি অংশ বা সমস্ত অংশ বিদ্যমান থাকে। বেশিরভাগ প্রকৃতকোষী (ইউক্যারিওটিক) জীবের ক্রোমোজোমে প্যাকেজিং প্রোটিন থাকে যাকে হিস্টোন বলা হয় যা ক্রোমোজোম অখণ্ডতা বজায় রাখতে চ্যাপেরোন প্রোটিনের সাহায্যে ডিএনএ অণুকে আবদ্ধ করে এবং ঘনীভূত করে। এই ক্রোমোজোমগুলো একটি জটিল ত্রি-মাত্রিক গঠন প্রদর্শন করে, যা ট্রান্সক্রিপশনাল রেগুলেশনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্রোমোজোমগুলো সাধারণত কেবল কোষ বিভাজনের মেটাফেজ দশাতেই আলোক অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে দৃশ্যমান হয়। কারণ, এই পর্যায়ে ক্রোমোজোমগুলো সবচেয়ে ঘনীভূত হয়ে কোষের বিষুবীয় অঞ্চলে সজ্জিত থাকে)। এটি ঘটার আগে, প্রতিটি ক্রোমোজোমের অনুলিপি হয়ে (এস ফেজ) উভয় অনুলিপিই একটি সেন্ট্রোমিয়ার দ্বারা যুক্ত হয়। সেন্ট্রোমিয়ারটি ক্রোমোজোমের মাঝামাঝি অবস্থান করলে একটি X-আকৃতির কাঠামো (উপরে চিত্রিত) তৈরি হয়। অন্যদিকে সেন্ট্রোমিয়ারটি কোনও একদিকে অবস্থান করলে দুই-বাহুবিশিষ্ট কাঠামোর সৃষ্টি হয় এতে সংযুক্ত অনুলিপিগুলোকে সিস্টার ক্রোমাটিড বলা হয়। মেটাফেজের সময় X-আকৃতির কাঠামোটিকে মেটাফেজ ক্রোমোজোম বলা হয়। এই পর্যায়ে ক্রোমোজোম অত্যন্ত ঘনীভূত হয় এবং এদের মধ্যে আলাদাভাবে চিহ্নিত করা ও পর্যবেক্ষণ করা সবচেয়ে সহজ। প্রাণীকোষে ক্রোমোজোমগুলো পৃথকীকরণের সময় অ্যানাফেজ দশায় তাদের সর্বোচ্চ সংকোচনের স্তরে পৌঁছায়। মিয়োসিস এবং পরবর্তী যৌন প্রজননের সময় ক্রোমোসোমাল পুনর্মিলন জেনেটিক বৈচিত্র্যের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ক্রোমোসোমাল অস্থিরতা এবং ট্রান্সলোকেশন নামে পরিচিত প্রক্রিয়াগুলোর মাধ্যমে এই কাঠামোগুলোকে যদি ভুলভাবে পরিচালনা করে, তবে কোষটি মাইটোটিক বিপর্যয়ের মধ্য দিয়ে যেতে পারে। সাধারণত, এটি কোষটিকে কোষপতন শুরু করবে যা তার নিজের মৃত্যুর দিকে নিয়ে যাবে, তবে কখনও কখনও কোষের মিউটেশন এই প্রক্রিয়াটিকে বাধা দেয় এবং এইভাবে ক্যান্সারের অগ্রগতি ঘটায়। কেউ কেউ ক্রোমোজোম শব্দটিকে বিস্তৃত অর্থে ব্যবহার করে, কোষে ক্রোমাটিনের স্বতন্ত্র অংশগুলোকে বোঝাতে, হয় দৃশ্যমান বা হালকা মাইক্রোস্কোপির অধীনে নয়। অন্যরা ধারণাটিকে সংকীর্ণ অর্থে ব্যবহার করে, কোষ বিভাজনের সময় ক্রোমাটিনের স্বতন্ত্র অংশগুলোকে বোঝাতে, উচ্চ ঘনীভবনের কারণে হালকা মাইক্রোস্কোপির অধীনে দৃশ্যমান। বুৎপত্তি গ্রীক ক্রোমা = রঙ, সোমা = দেহ। ) যেহেতু ক্রোমোজোমকে কিছু বিশেষ রঙ দিয়ে গভীর ভাবে রাঙানো যায়, তাই এই নাম। শব্দটি জার্মান অ্যানাটমিস্ট হেনরিখ উইলহেম ওয়াল্ডেয়ার দ্বারা প্রথম ব্যবহার করা হয়েছিল, ক্রোমাটিন শব্দটিকে উল্লেখ করে, যা কোষ বিভাজনের আবিষ্কারক ওয়ালথার ফ্লেমিং দ্বারা প্রবর্তিত হয়েছিল। প্রারম্ভিক কিছু ক্যারিওলজিক্যাল পদ পুরানো হয়ে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, ক্রোমাটিন (ফ্লেমিং ১৮৮o) এবং ক্রোমোজোম (ওয়াল্ডেয়ার ১৮৮৮), উভয়ই একটি অ-রঙিন অবস্থার জন্য রঙকে দায়ী করে। আবিষ্কারের ইতিহাস জার্মান বিজ্ঞানী শ্লেইডেন, ভির্চো এবং বুটসলি বিজ্ঞানীগণ ক্রোমোজোম হিসাবে পরিচিত কাঠামোগুলোকে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন। ১৮৮o-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে শুরু হওয়া পরীক্ষা-নিরীক্ষার একটি সিরিজে, থিওডোর বোভেরি ক্রোমোজোমগুলো বংশগতির ভেক্টর, দুটি ধারণার সাথে 'ক্রোমোজোম ধারাবাহিকতা' এবং 'ক্রোমোজোম স্বতন্ত্রতা' নামে পরিচিত হয়ে ওঠে তা ব্যাখ্যা করার জন্য নির্দিষ্ট অবদান রেখেছিলে। উইলহেলম রক্স পরামর্শ দিয়েছিলেন যে, প্রতিটি ক্রোমোজোম আলাদা জেনেটিক কনফিগারেশন বহন করে এবং বোভেরি এই অনুমান পরীক্ষা এবং নিশ্চিত করতে সক্ষম হয়েছিল।গ্রেগর জোহান মেন্ডেলের ১৯oo-এর শুরুতে পুনঃআবিষ্কারের সাহায্যে,বোভেরি উত্তরাধিকারের নিয়ম এবং ক্রোমোজোমের আচরণের মধ্যে সংযোগ নির্দেশ করতে সক্ষম হন। বোভেরি আমেরিকান সাইটোলজিস্টদের দুটি প্রজন্মকে প্রভাবিত করেছিলেন: এডমন্ড বিচার উইলসন, নেটি স্টিভেনস, ওয়াল্টার সাটন এবং থিওফিলাস পেইন্টার সকলেই বোভেরি দ্বারা প্রভাবিত ছিলেন (উইলসন, স্টিভেনস এবং পেইন্টার আসলে তাঁর সাথে কাজ করেছিলেন)। তার বিখ্যাত পাঠ্যপুস্তক দ্য সেল ইন ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড হেরিডিটি-তে, উইলসন উত্তরাধিকারের ক্রোমোজোম তত্ত্বকে বোভেরি-সাটন ক্রোমোজোম তত্ত্ব (নামগুলো কখনও কখনও বিপরীত করা হয়) নামকরণ করে বোভেরি এবং সাটনের (উভয়ই প্রায় ১৯o২ সালের দিকে) স্বাধীন কাজকে একত্রে যুক্ত করেছেন। আর্নস্ট মেয়ার মন্তব্য করেছেন যে এই তত্ত্বটি কিছু বিখ্যাত জেনেটিস্টদের দ্বারা তীব্রভাবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিল: উইলিয়াম বেটসন, উইলহেলম জোহানসেন, রিচার্ড গোল্ডশমিড এবং টিএইচ মরগান, সমস্তই একটি বরং গোঁড়ামিপূর্ণ মন। অবশেষে, সম্পূর্ণ প্রমাণ মর্গ্যানের নিজস্ব ল্যাবে ক্রোমোজোম মানচিত্র থেকে এসেছে। মানব ক্রোমোজোমের সংখ্যা ১৯২৩ সালে থিওফিলাস পেইন্টার প্রথম প্রকাশ করেছিলেন । মাইক্রোস্কোপের মাধ্যমে পরিদর্শন করে, তিনি ২৪ জোড়া গণনা করেছিলেন, যার অর্থ ৪৮টি ক্রোমোজোম। তার ত্রুটি অন্যদের দ্বারা অনুলিপি করা হয়েছিল এবং ১৯৫৬ সাল পর্যন্ত সত্য ক্রোমোজোম সংখ্যা ৪৬টি, ইন্দোনেশিয়ায় জন্মগ্রহণকারী সাইটোজেনেটিস্ট জো হিন টিজিও দ্বারা নির্ধারিত হয়েছিল। প্রোক্যারিওটস প্রোক্যারিওটস : - ব্যাকটেরিয়া এবং আর্কিয়া - সাধারণত একটি একক বৃত্তাকার ক্রোমোজোম থাকে, তবে অনেক বৈচিত্র বিদ্যমান। বেশিরভাগ ব্যাকটেরিয়ার ক্রোমোজোম, যাকে কিছু লেখক জেনোফোর বলতে পছন্দ করেন, এন্ডোসিমবায়োটিকব্যাকটেরিয়া -[[ক্যান্ডিডেটাস হজকিনিয়া সিকাডিকোলা]] এবং ক্যান্ডিডেটাস ট্রেম্বলায়া প্রিন্সেপস,এর মধ্যে মাত্র ১৩o,ooo বেস জোড়া ক্রোমোজোম হতে পারে। মাটিতে বসবাসকারী ব্যাকটেরিয়া- সোরাঞ্জিয়াম সেলুলসাম। বোরেলিয়া গোত্রের স্পিরোচেটিস এই ব্যবস্থার একটি উল্লেখযোগ্য ব্যতিক্রম, বোরেলিয়া বার্গডোরফেরির মতো ব্যাকটেরিয়া লাইম রোগের কারণ এবং এর একটি একক রৈখিক ক্রোমোজোম রয়েছে। ক্রমানুসারে গঠন প্রোক্যারিওটিক ক্রোমোজোমগুলোর ইউক্যারিওটসের তুলনায় কম ক্রম-ভিত্তিক গঠন থাকে। ব্যাকটেরিয়া সাধারণত একক বিন্দুর মতো। প্রোক্যারিওটের জিনগুলো প্রায়শই অপারনগুলোতে সংগঠিত হয় এবং ইউক্যারিওটের বিপরীতে সাধারণত ইন্ট্রোন থাকে না। ডিএনএ প্যাকেজিং প্রোক্যারিওটদের নিউক্লিয়াস থাকে না। এর পরিবর্তে, এদের ডিএনএ নিউক্লিয়েড নামে একটি কাঠামো সংগঠিত হয়ে থাকে। নিউক্লিওড একটি স্বতন্ত্র গঠন এবং ব্যাকটেরিয়া কোষের একটি নির্দিষ্ট অঞ্চল দখল করে। এই কাঠামোটি অবশ্য গতিশীল এবং হিস্টোন-সদৃশ প্রোটিনের ক্রিয়া দ্বারা রক্ষণাবেক্ষণ ও পুনর্নির্মাণ করে, যা ব্যাকটেরিয়া ক্রোমোজোমের সাথে যুক্ত। আর্চিয়ায় ক্রোমোজোমের ডিএনএ আরও বেশি সংগঠিত, ডিএনএ ইউক্যারিওটিক নিউক্লিওসোমের মতো কাঠামোর মধ্যে প্যাকেজযুক্ত। কিছু ব্যাকটেরিয়াতে প্লাজমিড বা অন্যান্য অতিরিক্ত ক্রোমোসোমাল ডিএনএ ও থাকে। এগুলো সাইটোপ্লাজম নামে পরিচিত। সাইটোপ্লাজম বৃত্তাকার কাঠামো, যা সেলুলার ডিএনএ ধারণ করে এবং এটি আনুভূমিক জিন স্থানান্তরে ভূমিকা পালন করে। প্রোক্যারিওটস ( নিউক্লিওডস।নিউক্লিওডসে দেখুন ) এবং ভাইরাসে ডিএনএ প্রায়ই ঘনবসতিপূর্ণ।আর্কিয়ার ক্ষেত্রে, ইউক্যারিওটিক হিস্টোনের সমতুল্য এবং ব্যাকটেরিয়ার ক্ষেত্রে হিস্টোন-সদৃশ প্রোটিন দ্বারা গঠিত। ব্যাকটেরিয়া ক্রোমোজোমগুলো ব্যাকটেরিয়ার প্লাজমা ঝিল্লির সাথে সংযুক্ত থাকে। আণবিক জীববিজ্ঞানের প্রয়োগে, এটি প্লাজমিড ডিএনএ থেকে লাইজড ব্যাকটেরিয়াকে কেন্দ্রীভূত করে এবং ঝিল্লির (এবং সংযুক্ত ডিএনএ) ছিদ্র করে বিচ্ছিন্ন করার অনুমতি দেয়। প্রোক্যারিওটিক ক্রোমোজোম এবং প্লাজমিডগুলো ইউক্যারিওটিক ডিএনএর মতো। সাধারণত সুপারকোয়েলডট্রান্সক্রিপশন, রেগুলেশন এবং রেপ্লিকেশনের অ্যাক্সেসের জন্য ডিএনএ কে প্রথমে তার শিথিল অবস্থায় ছেড়ে দিতে হবে। ইউক্যারিওটস প্রতিটি ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোমে প্রোটিনের সাথে যুক্ত একটি দীর্ঘ রৈখিক ডিএনএ অণু থাকে, যা ক্রোমাটিন নামক প্রোটিন এবং ডিএনএর একটি কমপ্যাক্ট কমপ্লেক্স গঠন করে। ক্রোমাটিন একটি জীবের ডিএনএর বিশাল সংখ্যাগরিষ্ঠতা ধারণ করে, তবে মাতৃত্বের উত্তরাধিকারসূত্রে অল্প পরিমাণে মাইটোকন্ড্রিয়াতে পাওয়া যায়। এটি বেশিরভাগ কোষে উপস্থিত থাকে, কয়েকটি ব্যতিক্রম সহ, উদাহরণস্বরূপ, লোহিত রক্তকণিকা। হিস্টোনগুলো ক্রোমোজোম সংগঠনের প্রথম এবং সবচেয়ে মৌলিক একক এবং নিউক্লিওসোমের জন্য দায়ী। ইউক্যারিওটস ( নিউক্লিয়াস সহ কোষ যেমন উদ্ভিদ, ছত্রাক এবং প্রাণীদের মধ্যে পাওয়া যায়) কোষের নিউক্লিয়াসে থাকা একাধিক বড় রৈখিক ক্রোমোজোম ধারণ করে। প্রতিটি ক্রোমোসোমের একটি করে সেন্ট্রোমিয়ার থাকে, যার একটি বা দুটি বাহু যুক্ত সেন্ট্রোমিয়ার থেকে প্রক্ষেপিত হয়, যদিও বেশিরভাগ পরিস্থিতিতে এই বাহুগুলো তেমন দৃশ্যমান হয় না। উপরন্তু, বেশিরভাগ ইউক্যারিওটের একটি ছোট বৃত্তাকার মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোম থাকে এবং কিছু ইউক্যারিওটে অতিরিক্ত ছোট বৃত্তাকার বা রৈখিক সাইটোপ্লাজমিক ক্রোমোজোম থাকতে পারে। ইউক্যারিওটের পারমাণবিক ক্রোমোজোমে, অসংকীর্ণ ডিএনএ একটি অর্ধ-ক্রমযুক্ত কাঠামোতে বিদ্যমান, যেখানে এটি হিস্টোন (গঠনগত প্রোটিন ) এর চারপাশে আবৃত থাকে, যা ক্রোমাটিন নামক একটি যৌগিক উপাদান তৈরি করে। ইন্টারফেজ ক্রোমাটিন নিউক্লিওসোমে ডিএনএর প্যাকেজিং ১o ন্যানোমিটার ফাইবার সৃষ্টি করে যা আরও ৩o এনএম ফাইবার পর্যন্ত ঘনীভূত হতে পারে ইন্টারফেজ নিউক্লিয়াসের বেশিরভাগ ইউক্রোমাটিন ৩o-এনএম ফাইবার আকারে বলে মনে হয়। ক্রোমাটিন গঠন হল আরও ডিকন্ডেন্সড স্টেট, অর্থাৎ ১o-এনএম কনফর্মেশন ট্রান্সক্রিপশনের অনুমতি দেয়। ইন্টারফেজ চলাকালীন ( কোষ চক্রের সময়কাল যেখানে কোষ বিভাজিত হয় না), দুই ধরনের ক্রোমাটিনকে আলাদা করা যায়: ইউক্রোমাটিন, যা সক্রিয় ডিএনএ নিয়ে গঠিত, যেমন, প্রোটিন হিসাবে প্রকাশ করা হচ্ছে। হেটেরোক্রোমাটিন, যা বেশিরভাগ নিষ্ক্রিয় ডিএনএ নিয়ে গঠিত। এটি ক্রোমোসোমাল পর্যায়ে কাঠামোগত উদ্দেশ্যে পরিবেশন করে বলে মনে হয়। গঠনমূলক হেটেরোক্রোমাটিন, যা কখনো প্রকাশ করা হয় না। এটি সেন্ট্রোমিয়ারের চারপাশে অবস্থিত এবং সাধারণত পুনরাবৃত্তিমূলক ক্রম ধারণ করে। ফ্যাকাল্টেটিভ হেটেরোক্রোমাটিন, যা কখনও কখনও প্রকাশ করা হয়। মেটাফেজ ক্রোমাটিন এবং বিভাজন মাইটোসিস বা মিয়োসিসের প্রাথমিক পর্যায়ে (কোষ বিভাজন) ক্রোমাটিন ডাবল হেলিক্স আরও ঘনীভূত হয়। তারা অ্যাক্সেসযোগ্য জেনেটিক উপাদান হিসাবে কাজ করা বন্ধ করে দেয় ( ট্রান্সক্রিপশন বন্ধ হয়ে যায়) এবং একটি কমপ্যাক্ট পরিবহনযোগ্য আকারে পরিণত হয়। ৩onm ক্রোমাটিন ফাইবারের লুপগুলো মাইটোটিক কোষের কমপ্যাক্ট মেটাফেজ ক্রোমোজোম গঠনের জন্য নিজেদের উপর আরও ভাঁজ করে বলে মনে করা হয়। এইভাবে ডিএনএ প্রায় ১o,ooo গুণ ঘনীভূত হয়। ক্রোমোজোম স্ক্যাফোল্ড, কনডেনসিন, TOP২A এবং KIF4 এর মতো প্রোটিন দিয়ে তৈরি। ক্রোমাটিন কমপ্যাক্ট ক্রোমোজোমকে ধরে রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। ৩o nm কাঠামোর লুপগুলো উচ্চ ক্রম কাঠামোতে ভারা সহ আরও ঘনীভূত হয়। এই অত্যন্ত কম্প্যাক্ট ফর্মটি পৃথক ক্রোমোজোমগুলোকে দৃশ্যমান করে তোলে এবং তারা ক্লাসিক চার-বাহু কাঠামো গঠন করে।সেন্ট্রোমিয়ারে একে অপরের সাথে সংযুক্ত বোন ক্রোমাটিডগুলো একটি জোড়া। খাটো বাহুগুলোকে p আর্মস বলা হয় (যা ফরাসি শব্দ পেটিট থেকে এসেছে, যার অর্থ-ছোট) এবং লম্বা বাহুগুলোকে বলা হয় q আর্মস (q ল্যাটিন বর্ণমালায় p অনুসরণ করে। যার অর্থ ফরাসি ভাষায় লেজ) )।এটিই একমাত্র প্রাকৃতিক প্রেক্ষাপট যেখানে পৃথক ক্রোমোজোমগুলো একটি অপটিক্যাল মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে দৃশ্যমান হয়। মাইটোটিক মেটাফেজ ক্রোমোজোমগুলোকে পরপর ক্রোমাটিন লুপগুলোর একটি রৈখিকভাবে সংগঠিত অনুদৈর্ঘ্যভাবে সংকুচিত অ্যারের দ্বারা সর্বোত্তমভাবে সক্রিয় করে। মাইটোসিসের সময় মাইক্রোটিউবুলগুলো কোষের বিপরীত প্রান্তে অবস্থিত সেন্ট্রোসোম থেকে বৃদ্ধি পায় এবং কাইনেটোচোরস নামক বিশেষ কাঠামোতে সেন্ট্রোমিয়ারের সাথে সংযুক্ত হয়। যার মধ্যে প্রতিটি বোন ক্রোমাটিডে উপস্থিত থাকে। কাইনেটোচোরসঅঞ্চল একটি বিশেষ ডিএনএ বেস ক্রম। এই বিশেষ অঞ্চল প্রোটিনের সাথে দীর্ঘস্থায়ী সংযুক্তি প্রদান করে।তারপরে মাইক্রোটিউবিউলগুলো ক্রোমাটিডগুলোকে সেন্ট্রোসোমের দিকে টেনে নিয়ে যায়, যাতে প্রতিটি জনন কোষ ক্রোমাটিডগুলোর একটি সেট উত্তরাধিকার সূত্রে পায়। একবার কোষগুলো বিভক্ত হয়ে গেলে, ক্রোমাটিডগুলো আনকোয়েল করা হয় এবং ডিএনএ আবারও প্রতিলিপি করা শুরু করে। ক্রোমোজোমগুলো গঠনগতভাবে অত্যন্ত ঘনীভূত হয়, যা এই দৈত্যাকার ডিএনএ গঠনগুলোকে কোষের নিউক্লিয়াসের মধ্যে থাকতে সক্ষম করে। মানুষের ক্রোমোজোম মানুষের ক্রোমোজোম দুটি প্রকারে বিভক্ত করা যেতে পারে: অটোসোম s (শরীরের ক্রোমোজোম(গুলো)) এবং অ্যালোসোম ( X এবং Y ক্রোমোজোম,যৌন ক্রোমোজোম)। কিছু জিনগত বৈশিষ্ট্য একজন ব্যক্তির লিঙ্গের সাথে যুক্ত এবং সেক্স ক্রোমোজোমের মাধ্যমে প্রেরণ করা হয়। অটোসোমে বাকি জিনগত বংশগত তথ্য থাকে। কোষ বিভাজনের সময় সবাই একইভাবে কাজ করে। মানুষের (পুরুষ ও নারী উভয়ের) কোষে ২৩ জোড়া (মোট ৪৬টি) ক্রোমোজোম থাকে। এর ২২ জোড়া অটোসোম এবং ২৩ তম জোড়া হল সেক্স ক্রোমোজোম (X এবং Y ক্রোমোজোম)। মহিলাদের দুটি X ক্রোমোজোম (XX) থাকে,পুরুষদের একটি X এবং একটি Y ক্রোমোজোম (XY) থাকে। X ক্রোমোজোম, Y ক্রোমোজোমের তুলনায় তিনগুন লম্বা এবং X ক্রোমোজোমে 900টি প্রোটিন কোডিং জিন রয়েছে, Y ক্রোমোজোমে 100 প্রোটিন কোডিং জিন আছে । মহিলারা পিতার কাছ থেকে একটি X ক্রোমোজোম এবং মায়ের কাছ থেকে অন্য X ক্রোমোজোমটি উত্তরাধিকার সূত্রে পায়। পুরুষ সবসময় পিতার কাছ থেকে Y ক্রোমোজোম,মায়ের কাছ থেকে X ক্রোমোজোম পায় । স্ত্রী স্তন্যপায়ী প্রাণীর প্রতিটি কোষে দুটি X ক্রোমোজোম থাকে,যার একটি X ক্রোমোজোমের নিষ্ক্রিয় হয়ে যায়। এই ধরনের নিষ্ক্রিয়তা ট্রান্সক্রিপশন ঘটতে বাধা দেয়, X-লিঙ্কযুক্ত জিনের বিষাক্ত ডবল ডোজ না ঘটা নিশ্চিত করে। এগুলো ছাড়াও, মানব কোষে মাইটোকন্ড্রিয়াল জিনোমের মধ্যে কয়েক শত কপি রয়েছে। মানুষের জিনোমের সিকোয়েন্সিংপ্রতিটি ক্রোমোজোম সম্পর্কে প্রচুর তথ্য প্রদান করেছে। নিচে ক্রোমোজোমের পরিসংখ্যান সংকলন করার একটি টেবিল রয়েছে, যা মেরুদণ্ডী জিনোম অ্যানোটেশন (VEGA) ডাটাবেসে স্যাঙ্গার ইনস্টিটিউটের মানব জিনোমের তথ্যের উপর ভিত্তি করে। জিনের সংখ্যা একটি অনুমান, কারণ এটি আংশিকভাবে জিনের পূর্বাভাস এর উপর ভিত্তি করে। মোট ক্রোমোজোমের দৈর্ঘ্যও একটি অনুমান, অনুক্রমহীন হেটেরোক্রোমাটিন অঞ্চলের আনুমানিক আকারের উপর ভিত্তি করে। ক্রোমোজোমের কাজ ক্রোমোজোমের কাজ: ক্রোমোজোম বস্তুটি বিভিন্ন দিক দিয়ে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ক্রোমোজোমের কাজকে এইভাবে তালিকাবদ্ধ করা যেতে পারে- (১) ক্রোমোজোম প্রকৃতপক্ষে বংশগতির ধারক ও বাহক। ক্রোমোজোম মধ্যস্থ জিন বা D. N. A.( Dioxy Ribonucleic Acid) ঐ বংশগতি (Heredity) নিয়ন্ত্রণের জন্যে দায়ী। জীবদেহের যাবতীয় বৈশিষ্ট্য জিনগুলির মধ্যে নিহিত থাকে। আগে মনে করা হত যে প্রতিটি বৈশিষ্ট্যের জন্য দায়ী এক একটি জিন।কিন্তু বর্তমানে জানা গেছে যে একাধিক জিন কোনো বিশেষ বৈশিষ্ট্য প্রকাশের জন্যে দায়ী হতে পারে। এমনকি একটি জিনও যদি একটি বৈশিষ্ট্য বহন করে সেক্ষেত্রে ক্রোমোজোমের উপর তার বিশেষ অবস্থানও তাৎপর্যপূর্ণ কেননা আশেপাশের জিনগুলি ঐ বিশেষ জিনের ক্রিয়াকলাপের উপর প্রভাব বিস্তার করে। এই কারণে ক্রোমোজোমের সংখ্যাগত বা প্রকৃতিগত পরিবর্তন (Mutation) জীবদেহে অর্থাৎ অপত্য দেহে বিপুল পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে। (২) ক্রোমোজোমের D. N. A. উপাদান কোষ বিভাজনকালে তার সমগ্র চেহারার একটি হুবহু প্রতিমূর্তি বা নকল তৈরী করে নেয় (Replication of D.N.A) যা অপত্যকোষে চলে যায়। এই কারণেই অপত্যকোষ মাতৃকোষের সমস্ত গুণ বা বৈশিষ্ট্য লাভ করে। এইভাবে জীবদেহের প্রতিটি কোষে সেই প্রজাতির বৈশিষ্ট্যগুলিকে টিকিয়ে রাখার দায়িত্ব ক্রোমোজোমের। (৩) কোষের মধ্যে যে সব জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়া ঘটে চলেছে ক্রোমোজোম সে সমস্তই নিয়ন্ত্রণ করে। আসলে ঐ সব জৈব রাসায়নিক প্রক্রিয়ার প্রতিটিতে বিশেষ বিশেষ এনজাইম লাগে এবং জিনের কাজ ঐসব এনজাইমের কাজ নিয়ন্ত্রণ করা। জিন ও এনজাইমের এইরকম ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের কথা সম্প্রতি আবিষ্কৃত হয়েছে (One gene-one enzyme Theory)। (৪) সাইটোপ্লাজমের মধ্যে প্রতিনিয়ত যে প্রোটিন সংশ্লেষণের কাজ চলে তার জন্যে প্রয়োজনীয় নির্দেশ আসে ক্রোমোজোমের D. N. A. থেকে। অর্থাৎ কোষে কী ধরনের প্রোটিন সংশ্লেষিত হবে তা পুরোপুরি ক্রোমোজোমের নিয়ন্ত্রণাধীন। এইভাবে দেখা যাচ্ছে যে একদিকে যেমন ক্রোমোজোম সজীব কোষের সামগ্রিক শারীরবৃত্ত (Physiology) নিয়ন্ত্রণ করে ও অপরদিকে তেমনি তা বংশপরস্পরায় ঐ কোষের (অর্থাৎ জীবদেহের) চরিত্র (genetic character) অপরিবর্তিত রাখে।(তথ্য সূত্র: উচ্চমাধ্যমিক জীববিজ্ঞান, নভেম্বর,১৯৭৬,বন্দ্যোপাধ্যায়-ষন্নিগ্ৰহী, পৃঃ ৩১,৩২)। বিভিন্ন জীবে সংখ্যা ইউক্যারিওট ইউক্যারিওটে ক্রোমোজোমের সংখ্যা অত্যন্ত পরিবর্তনশীল (টেবিল দেখুন)। প্রকৃতপক্ষে, ক্রোমোজোমগুলো ফিউজ করে বা ভাঙতে পারে এবং এইভাবে অভিনব ক্যারিওটাইপগুলো বিবর্তিত হতে পারে। ক্রোমোজোমগুলোও কৃত্রিমভাবে মিশ্রিত করা যেতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, খামিরের ১৬টি ক্রোমোজোম একটি দৈত্যাকার ক্রোমোজোমে মিশ্রিত করা হয়েছে এবং কোষগুলো এখনও কিছুটা কম বৃদ্ধির হারের সাথে কার্যকর থাকে। নিচের সারণীগুলো একটি কোষের নিউক্লিয়াসে মোট ক্রোমোজোমের (সেক্স ক্রোমোজোম সহ) সংখ্যা নির্দেশ করে। উদাহরণস্বরূপ-বেশিরভাগ ইউক্যারিওট ডিপ্লয়েড, মানুষের মতো যাদের ২২টি ভিন্ন ধরনের অটোসোম রয়েছে। প্রতিটিতে দুটি সমজাতীয় জোড়া এবং দুটি সেক্স ক্রোমোজোম রয়েছে। এটি মোট ৪৬টি ক্রোমোজোম নির্দেশকরে।অন্যান্য জীবের ক্রোমোজোমের দুইটিরও বেশি কপি রয়েছে। যেমন ব্রেড হুইট (যা হেক্সাপ্লয়েড) এতে মোট ৪২টি ক্রোমোজোম থাকে। একটি নির্দিষ্ট ইউক্যারিওটিক প্রজাতির সাধারণ সদস্যদের সকলেরই একই সংখ্যক পারমাণবিক ক্রোমোজোম থাকে (টেবিলটি দেখুন)। অন্যান্য ইউক্যারিওটিক ক্রোমোজোম, অর্থাৎ মাইটোকন্ড্রিয়াল এবং প্লাজমিডের মতো ছোট ক্রোমোজোম সংখ্যায় অনেক বেশি পরিবর্তনশীল এবং প্রতি কোষে হাজার হাজার কপি থাকতে পারে। অযৌনভাবে প্রজননকারী প্রজাতির এক সেট ক্রোমোজোম থাকে যা শরীরের সমস্ত কোষে একই রকম। যাইহোক, অযৌন প্রজাতির হ্যাপ্লয়েড বা ডিপ্লয়েড হতে পারে। যৌনভাবে প্রজননকারী প্রজাতির সোমাটিক কোষ (দেহের কোষ) আছে, যেগুলো ডিপ্লয়েড [২n] ক্রোমোজোমের দুই সেট (মানুষে ২৩জোড়া)এর মধ্যে এক সেট মায়ের থেকে এবং বাবার কাছ থেকে আর একটি সেট। গেমেটে প্রজনন কোষ, হল হ্যাপ্লয়েড [n], এদের এক সেট ক্রোমোজোম রয়েছে। গেমেটগুলো একটি ডিপ্লয়েড জীবাণু রেখা কোষের মিয়োসিস দ্বারা উৎপাদিত হয়। মিয়োসিসের সময়, পিতা এবং মাতার মিলিত ক্রোমোজোমগুলো নিজেদের ছোট ছোট অংশ (ক্রসওভার) বিনিময় করতে পারে এবং এইভাবে নতুন ক্রোমোজোম তৈরি করতে পারে,যা শুধুমাত্র পিতামাতার কাছ থেকে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া যায় না। যখন একটি পুরুষের এবং একটি মহিলার গ্যামেট একত্রিত হয় (নিষিক্তকরণ), তখন একটি নতুন ডিপ্লয়েড জীব গঠিত হয়। কিছু প্রাণী ও উদ্ভিদের প্রজাতি হল পলিপ্লয়েড [Xn]: তাদের দুই সেটেরও বেশি সমজাতীয় ক্রোমোজোম আছে। তামাক বা গমের মতো কৃষিতে গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদগুলো তাদের পূর্বপুরুষের প্রজাতির তুলনায় প্রায়শই পলিপ্লয়েড হয়। গমের সাতটি ক্রোমোজোমের হ্যাপ্লয়েড সংখ্যা রয়েছে, যা এখনও কিছু কাল্টিভার এবং সেইসাথে বন্য বংশোদ্ভূতদের মধ্যে দেখা যায়। আরও সাধারণ পাস্তা এবং রুটি গমের প্রকারগুলো হল পলিপ্লয়েড, বন্য গমের ১৪টি (ডিপ্লয়েড) ক্রোমোজোমের তুলনায় ২৮টি (টেট্রাপ্লয়েড) এবং ৪২টি (হেক্সাপ্লয়েড) ক্রোমোজোম রয়েছে। প্রোক্যারিওট প্রোকারিওট প্রজাতির সাধারণত প্রতিটি প্রধান ক্রোমোজোমের একটি অনুলিপি থাকে, তবে বেশিরভাগ কোষ সহজেই একাধিক অনুলিপি নিয়ে বেঁচে থাকতে পারে। উদাহরণ স্বরূপ, বুচনেরা, এফিড এর একটি সিম্বিওন্ট এর ক্রোমোজোমের একাধিক কপি রয়েছে, প্রতি কোষে ১o-৪oo কপি। যাইহোক, কিছু বড় ব্যাকটেরিয়াতে, যেমন ইপুলোপিসিয়াম ফিশেলসনিতে ক্রোমোজোমের ১oo,ooo কপি পর্যন্ত উপস্থিত থাকতে পারে। প্লাজমিড এবং প্লাজমিড-সদৃশ ছোট ক্রোমোজোমগুলো, ইউক্যারিওটের মতো, অনুলিপি সংখ্যায় অত্যন্ত পরিবর্তনশীল। কোষে প্লাজমিডের সংখ্যা প্রায় সম্পূর্ণরূপে প্লাজমিডের বিভাজনের হার দ্বারা নির্ধারিত হয় - দ্রুত বিভাজন উচ্চ কপি সংখ্যার কারণ হয়। ক্যারিওটাইপ সাধারণভাবে, ক্যারিওটাইপ হল একটি ইউক্যারিওট প্রজাতি এর বৈশিষ্ট্যযুক্ত ক্রোমোজোম পরিপূরক। ক্যারিওটাইপগুলোর প্রস্তুতি এবং অধ্যয়ন সাইটোজেনেটিক্স এর অংশ। যদিও ডিএনএ-এর প্রতিলিপি এবং ট্রান্সক্রিপশন ইউক্যারিওটস-এ অত্যন্ত মানসম্মত, তবে তাদের ক্যারিওটাইপগুলোর জন্য একই কথা বলা যায় না, যা প্রায়শই উচ্চতর হয়। পরিবর্তনশীল ক্রোমোজোম সংখ্যা এবং বিস্তারিত সংগঠনে প্রজাতির মধ্যে পার্থক্য থাকতে পারে। কিছু ক্ষেত্রে, প্রজাতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য তারতম্য রয়েছে। প্রায়শই আছে: ১ দুটি লিঙ্গের মধ্যে পার্থক্য ২। জীবাণু-রেখা এবং সোমা (গেমেটে এবং শরীরের বাকি অংশের মধ্যে পার্থক্য ৩। জনসংখ্যার সদস্যদের মধ্যে পার্থক্য, ভারসাম্য জেনেটিক পলিমরফিজম এর কারণে ৪। অ্যালোপ্যাট্রিক প্রজাতি ৫। মোজাইক বা অন্যথায় অস্বাভাবিক ব্যক্তি। এছাড়াও, নিষিক্ত ডিম থেকে বিকাশের সময় ক্যারিওটাইপের তারতম্য ঘটতে পারে। ক্যারিওটাইপ নির্ধারণের কৌশলটিকে সাধারণত ক্যারিওটাইপিং বলা হয়। কোষগুলোকে বিভাজনের মাধ্যমে আংশিকভাবে লক করা যেতে পারে (মেটাফেজে) ইন ভিট্রো (একটি প্রতিক্রিয়া শিশিতে) কোলচিসিন দিয়ে। তারপরে এই কোষগুলোকে দাগ দেওয়া হয়, ফটোগ্রাফ করা হয় এবং একটি ক্যারিওগ্রাম-এ সাজানো হয়, যেখানে ক্রোমোজোমের সেট সাজানো হয়, দৈর্ঘ্যের ক্রম অনুসারে অটোজোম এবং শেষে সেক্স ক্রোমোজোম (এখানে X/Y)। অনেক যৌন প্রজননকারী প্রজাতির মতো, মানুষের বিশেষ গনসোম (যৌন ক্রোমোজোম, স্বয়ংক্রিয়গুলোর বিপরীতে) রয়েছে। এগুলো মহিলাদের মধ্যে XX এবং পুরুষদের মধ্যে XY। ইতিহাস এবং বিশ্লেষণ কৌশল মানব ক্যারিওটাইপের তদন্তে সবচেয়ে মৌলিক প্রশ্নটি নিষ্পত্তি করতে অনেক বছর লেগেছিল প্রশ্নটি হলো: একটি স্বাভাবিক ডিপ্লয়েড মানব কোষে কতটি ক্রোমোজোম থাকে? ১৯১২ সালে, হ্যান্স ফন উইনিওয়ার্টার ৪৭টি ক্রোমোজোম হওয়ার দাবি করেছিলেন স্পার্মাটোগোনিয়া এবং ওগোনিয়া- ৪৮টি ক্রোমোজোম হওয়ার দাবি করেছিলেন। পেইন্টার ১৯২২ সালে মানুষের ডিপ্লয়েড সংখ্যা ৪৬ নাকি ৪৮, প্রথমে তিনি ৪৬ এর পক্ষে ছিল।কিন্তু তা নিশ্চিত ছিল না। তিনি পরবর্তীতে তার মতামতকে ৪৬ থেকে ৪৮ পর্যন্ত সংশোধন করেন এবং তিনি সঠিকভাবে মানুষের একটি XX/XY সিস্টেমের ওপর জোর দেন। সমস্যাটি নিশ্চিতভাবে সমাধান করার জন্য এই নতুন কৌশলগুলোর প্রয়োজন ছিল: কোলচিসিন এর একটি দ্রবণ দ্বারা মেটাফেজ এ আটক করা মাইটোসিস। একটি হাইপোটোনিক দ্রবণ o.o৭৫ M KCl-এ প্রিট্রিটিং কোষ, যা তাদের ফুলিয়ে দেয় এবং ক্রোমোজোম ছড়িয়ে দেয়। স্লাইডে প্রস্তুতি স্কোয়াশ করা ক্রোমোজোমগুলোকে একক সমতলে জোর করে। একটি ফটোমাইক্রোগ্রাফ কাটা এবং ফলাফলটিকে একটি অবিসংবাদিত ক্যারিওগ্রামে সাজানো। মানব ডিপ্লয়েড সংখ্যা ৪৬টি হিসাবে নিশ্চিত হওয়ার আগে এটি ১৯৫৪ সাল পর্যন্ত সময় নেয়। উইনিওয়ার্টার এবং পেইন্টারের কৌশলগুলো বিবেচনা করে এবং তাদের ফলাফলগুলো বেশ উল্লেখযোগ্য ছিল।শিম্পাঞ্জি, আধুনিক মানুষের সবচেয়ে কাছের জীবিত আত্মীয়, অন্যান্য মহান এপস এর মতো ৪৮টি ক্রোমোজোম রয়েছে: মানুষের মধ্যে দুটি ক্রোমোজোম মিলিত হয়ে গঠন করে ক্রোমোজোম ২। অ্যাবরেশন ক্রোমোসোমাল বিচ্যুতি হল, একটি কোষের স্বাভাবিক ক্রোমোসোমাল বিষয়বস্তুতে বাধা হওয়া। এটি মানুষের মধ্যে জেনেটিক অবস্থার একটি প্রধান কারণ, যেমন ডাউন সিনড্রোম। যদিও বেশিরভাগ অ্যাবরেশনের কোনো প্রভাব নেই। কিছু ক্রোমোজোম অস্বাভাবিক বাহকদের মধ্যে রোগ সৃষ্টি করে না, যেমন ট্রান্সলোকেশন, বা ক্রোমোজোম ইনভার্সনস।যদিও তারা ক্রোমোজোম ডিসঅর্ডারে আক্রান্ত একটি শিশুর জন্মের উচ্চ সম্ভাবনার দিকে নিয়ে যেতে পারে। ক্রোমোজোমের অস্বাভাবিক সংখ্যা বা ক্রোমোজোম সেট যাকে অ্যানিপ্লয়েডি বলা হয়।এটি প্রাণঘাতী হতে পারে বা জেনেটিক ব্যাধির জন্ম দিতে পারে।জেনেটিক কাউন্সেলিং, ক্রোমোজোম পুনর্বিন্যাস বহন করতে পারে এমন পরিবারের জন্য দেয়। ক্রোমোজোম থেকে ডিএনএ লাভ বা ক্ষতি বিভিন্ন ধরনের জেনেটিক ডিসঅর্ডার হতে পারে। এতে মানুষের উদাহরণ অন্তর্ভুক্ত: Cri du chat, যা ক্রোমোজোম ৫ এর ছোট হাতের অংশের মোছা দ্বারা সৃষ্ট হয়। "ক্রি ডু চ্যাট" এর অর্থ ফরাসি ভাষায় "বিড়ালের কান্না"; অবস্থার এমন নামকরণ করা হয়েছিল কারণ আক্রান্ত শিশুরা বিড়ালের মতো উচ্চস্বরে কান্নাকাটি করে। আক্রান্ত ব্যক্তিদের চোখ চওড়া, ছোট মাথা এবং চোয়াল, মাঝারি থেকে গুরুতর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং খুব ছোট। ডাউন সিন্ড্রোম, সবচেয়ে সাধারণ ট্রাইসোমি, সাধারণত ক্রোমোজোম ২১ (ট্রাইসমি ২১) এর অতিরিক্ত অনুলিপি দ্বারা সৃষ্ট। বৈশিষ্ট্যগুলোর মধ্যে রয়েছে পেশীর স্বর হ্রাস, স্টকিয়ার বিল্ড, অসমম্যাট্রিকাল মাথার খুলি, তির্যক চোখ এবং হালকা থেকে মাঝারি বিকাশগত অক্ষমতা। এডওয়ার্ডস সিনড্রোম, বা ট্রাইসোমি-১৮, দ্বিতীয় সবচেয়ে সাধারণ ট্রাইসোমি। লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে মোটর প্রতিবন্ধকতা, বিকাশজনিত অক্ষমতা এবং অসংখ্য জন্মগত অসঙ্গতি যা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করে। আক্রান্তদের নব্বই শতাংশ শৈশবেই মারা যায়। তাদের বৈশিষ্ট্যযুক্ত হাত এবং আঙ্গুলগুলো ওভারল্যাপ করা আছে। Isodicentric 15, যাকে বলা হয় idic(15), আংশিক টেট্রাসোমি ১৫q, বা ইনভার্টেড ডুপ্লিকেশন ১৫ (inv dup ১৫)। জ্যাকবসেন সিনড্রোম, যা খুবই বিরল। একে টার্মিনাল ১১q ডিলিট ডিসঅর্ডারও বলা হয়। এই রোগে আক্রান্তদের স্বাভাবিক বুদ্ধিমত্তা বা মৃদু বিকাশজনিত অক্ষমত হয় এবং দুর্বল অভিব্যক্তিপূর্ণ বেশিরভাগেরই প্যারিস-ট্রাউসেউ সিনড্রোম নামে রক্তপাতের ব্যাধি হতে পারে। ক্লাইনফেল্টার সিন্ড্রোম (XXY)। ক্লাইনফেল্টার সিন্ড্রোমে আক্রান্ত পুরুষরা সাধারণত জীবাণুমুক্ত হয় এবং তাদের সমবয়সীদের তুলনায় লম্বা হতে থাকে এবং তাদের হাত ও পা লম্বা হয়। সিন্ড্রোমে আক্রান্ত ছেলেরা প্রায়ই লাজুক এবং শান্ত থাকে এবং তাদের কথার বিলম্ব এবং ডিসলেক্সিয়া এর প্রবণতা বেশি থাকে। টেস্টোস্টেরন চিকিৎসা ছাড়া কিছু মানুষের বয়ঃসন্ধিকালে গাইনেকোমাস্টিয়া হতে পারে। পাটাউ সিনড্রোম, যাকে ডি-সিনড্রোম বা ট্রাইসোমি-১৩ও বলা হয়। লক্ষণগুলো কিছুটা ট্রাইসোমি-১৮-এর মতো, বৈশিষ্ট্যগতভাবে ভাঁজ করা হাত ছাড়াই। ছোট সুপারনিউমারারি মার্কার ক্রোমোজোম এর মধ্যে একটি অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক ক্রোমোজোম আছে। এর বৈশিষ্ট্যগুলো অতিরিক্ত জেনেটিক উপাদানের উৎসের উপর নির্ভর করে। ক্যাট-আই সিন্ড্রোম এবং আইসোডিসেন্ট্রিক ক্রোমোজোম ১৫ সিন্ড্রোম (বা আইডিক ১৫) উভয়ই একটি সুপারনিউমারারি মার্কার ক্রোমোজোম দ্বারা সৃষ্ট, যেমনটি প্যালিস্টার-কিলিয়ান সিনড্রোম। ট্রিপল-এক্স সিন্ড্রোম (XXX)। XXX মেয়েরা লম্বা এবং চিকন হয় এবং তাদের ডিসলেক্সিয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। টার্নার সিন্ড্রোম (XX বা XY-এর পরিবর্তে X)। টার্নার সিন্ড্রোমে, মহিলাদের যৌন বৈশিষ্ট্য উপস্থিত কিন্তু অনুন্নত। টার্নার সিন্ড্রোমে আক্রান্ত মহিলাদের প্রায়শই ছোট আকার, চুলের রেখা কম, চোখের অস্বাভাবিক বৈশিষ্ট্য এবং হাড়ের বিকাশ এবং বুকে "ক্যাভড-ইন" চেহারা থাকে। ওল্ফ-হার্শহর্ন সিন্ড্রোম, যা ক্রোমোজোম ৪ এর ছোট হাতের আংশিক মুছে ফেলার কারণে ঘটে। এটি বৃদ্ধি প্রতিবন্ধকতা, বিলম্বিত মোটর দক্ষতা বিকাশ, "গ্রীক হেলমেট" মুখের বৈশিষ্ট্য এবং হালকা থেকে গভীর মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যা দ্বারা চিহ্নিত করা হয়। . XYY সিন্ড্রোম। XYY ছেলেরা সাধারণত তাদের ভাইবোনের চেয়ে লম্বা হয়। XXY ছেলে এবং XXX মেয়েদের মত তাদের শেখার অসুবিধা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে। স্পার্ম অ্যানিউপ্লয়েডি নির্দিষ্ট জীবনধারা, পরিবেশগত এবং পেশাগত ঝুঁকি পুরুষদের এক্সপোজার অ্যানিউপ্লয়েড স্পার্মাটোজোয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়াতে পারে। বিশেষ করে, তামাক ধূমপানের ফলে অ্যানিউপ্লয়েডির ঝুঁকি বেড়ে যায়, এবং বেনজিনের পেশাগত এক্সপোজার, কীটনাশক, এবং পারফুলুওরিনেটেড যৌগ বর্ধিত অ্যানিউপ্লয়েডি প্রায়শই শুক্রাণুতে ডিএনএ এর ক্ষতির সাধন করে। তথ্যসূত্র আরও দেখুন ডিএনএ ওয়াই-ক্রোমোজোমাল অ্যাডাম বহিঃসংযোগ An Introduction to DNA and Chromosomes HOPES থেকে: স্ট্যানফোর্ডে শিক্ষার জন্য হান্টিংটনের আউটরিচ প্রকল্প। Chromosome Abnormalities at AtlasGeneticsOncology On-line exhibition on chromosomes and genome (SIB) What Can Our Chromosomes Tell Us?, উটাহ জেনেটিক সায়েন্স লার্নিং সেন্টার বিশ্ববিদ্যালয়। Try making a karyotype yourself, উটাহ জেনেটিক সায়েন্স লার্নিং সেন্টার ইউনিভার্সিটি Kimballs Chromosome pages Chromosome News from Genome News Network Eurochromnet, ইউরোপীয় নেটওয়ার্ক। Ensembl.org, Ensembl project, presenting chromosomes, their genes and syntenic loci graphically via the web Genographic Project Home reference on Chromosomes ইউএস ন্যাশনাল লাইব্রেরি অফ মেডিসিন। Visualisation of human chromosomes এবং অন্যান্য প্রজাতির সাথে তুলনা। Unique – The Rare Chromosome Disorder Support Group ক্রোমোজোম ব্যাধিযুক্ত লোকেদের জন্য সমর্থন Nuclear substructures Cytogenetics বংশাণুবিজ্ঞান প্রাণিবিজ্ঞান আণবিক জীববিজ্ঞান
https://en.wikipedia.org/wiki/Chromosome
Chromosome
A chromosome is a package of DNA with part or all of the genetic material of an organism. In most chromosomes, the very long thin DNA fibers are coated with nucleosome-forming packaging proteins; in eukaryotic cells the most important of these proteins are the histones. These proteins, aided by chaperone proteins, bind to and condense the DNA molecule to maintain its integrity. These chromosomes display a complex three-dimensional structure, which plays a significant role in transcriptional regulation. Chromosomes are normally visible under a light microscope only during the metaphase of cell division (where all chromosomes are aligned in the center of the cell in their condensed form). Before this happens, each chromosome is duplicated (S phase), and both copies are joined by a centromere, resulting either in an X-shaped structure (pictured above), if the centromere is located equatorially, or a two-arm structure, if the centromere is located distally. The joined copies are now called sister chromatids. During metaphase, the X-shaped structure is called a metaphase chromosome, which is highly condensed and thus easiest to distinguish and study. In animal cells, chromosomes reach their highest compaction level in anaphase during chromosome segregation. Chromosomal recombination during meiosis and subsequent sexual reproduction play a significant role in genetic diversity. If these structures are manipulated incorrectly, through processes known as chromosomal instability and translocation, the cell may undergo mitotic catastrophe. Usually, this will make the cell initiate apoptosis leading to its own death, but sometimes mutations in the cell hamper this process and thus cause progression of cancer. Some use the term chromosome in a wider sense, to refer to the individualized portions of chromatin in cells, either visible or not under light microscopy. Others use the concept in a narrower sense, to refer to the individualized portions of chromatin during cell division, visible under light microscopy due to high condensation.
1309
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%87%E0%A6%89%E0%A6%9F%E0%A7%87%20%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%AA
কেউটে সাপ
পদ্ম গোখরা (বৈজ্ঞানিক নাম Naja kaouthia, ইংরেজিতে monocled cobra) হল গোখরা প্রজাতির একটি সাপ যা দক্ষিণ এবং দক্ষিণপূর্ব এশিয়া দেখা যায়। এটিকে আইইউসিএন কর্তৃক ন্যূনতম বিপদগ্রস্ত তালিকাভুক্ত করা হয়েছে। এ গোখরোর ফণার পিছনে গরুর ক্ষুরের মত দাগ থাকে যার থেকে বাংলা গোক্ষুর নামটি এসেছে। অন্যদিকে ইংরেজিতে মনোকলড অর্থ হল একচোখা। এ সাপটিকে মনোকলড বলার কারন হল এই সাপের ফণার পিছনে গোল দাগ থাকে যা দেখতে একচোখা চশমার মত লাগে তাই এর ইংরেজি নাম মনোকল্ড কোবরা। সকল গোখরা প্রজাতির সাপ উত্তেজিত হলে ফণা মেলে ধরে। সাপের ঘাড়ের লম্বা হাড় স্ফীত হয়ে ওঠে, তাতে চমৎকার ফণাটি বিস্তৃত হয়। ইংরেজি কোবরার (Cobra) আক্ষরিক অর্থ হল গোখরা। প্রকৃত পক্ষে কোবরা হল নাজা নামক বিস্তৃত ও বৃহৎ সর্পগণ (Genus)। এই গণে (Genus) সকল প্রজাতির কোবরাকে অর্ন্তভুক্ত করা হয়। কোবরা ভারতীয় উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশ ছাড়াও মিশর, আরব, দক্ষিণ আফ্রিকা, বার্মা, চীন ইত্যাদি দেশ ও অঞ্চলে দেখা যায়। অনেকে ভুলবশত গোখরা বলতে শুধুমাত্র স্পেকটাকলড কোবরা বা মনোকল্ড কোবরাকে বুঝে থাকে। এটি আসলে একটি বৃহৎ সর্পগোষ্ঠির সাধারণ নাম। বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনে এ প্রজাতিটি সংরক্ষিত। ব্যুৎপত্তি কেউটে শব্দটি এসেছে সংস্কৃত শব্দ কালকূট থেকে। শ্রেণিবিন্যাস বৈজ্ঞানিক নাম নাজা কৌথিয়া ১৮৩১ সালে রেন লেসন প্রস্তাব করেছিলেন। তিনি মনোকলড কোবরাকে একটি সুন্দর সাপ হিসাবে বর্ণনা করেছিলেন যা খৈয়া গোখরা থেকে পৃথক। এর ১৮৮ ভেন্ট্রাল স্কেল এবং ৫৩ জোড়া শৈলাকার আঁশ বিন্যাস রয়েছে। সেই থেকে বেশ কয়েকটি মনোকলড কোবরা বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক নামে বর্ণিত হয়েছিল: ১৮৩৪ সালে জন এডওয়ার্ডসের গ্রে প্রকাশিত টমাস হার্ডউইকস এর অধীনে একটি মনোকলড কেউটের প্রথম চিত্রণ করেন ট্রাইনোমিয়ান নোমেনক্লেচারের ভিত্তিতে নাজা ট্রাইপুডিয়ানস ভার.ফ্যাসিটা (Naja tripudians Var fasciata) । ১৮৩৯ সালে, থিওডোর এডওয়ার্ড ক্যান্টর বোম্বাই, কলকাতা এবং আসামে ট্রাইনোমিয়ান নোমেনক্লেচারের ভিত্তিতে নাজা লার্ভাতার (Naja larvata) অধীনে সাদা আংটির চিহ্নযুক্ত একটি বাদামী বর্ণের মনোকলড কোবরার বর্ণনা করেছিলেন। ১৮৯৫ এবং ১৯১৩ এর মধ্যে দ্বিপদী নাজা ট্রিপুডিয়ানদের অধীনে বিভিন্ন জাতের মনোকলড কোবরা বর্ণিত হয়েছিল: এন জে ভার স্কোপিনিচা ১৮৯৫ এন জে ভার একরঙা ১৮৭৬ এন জে ভার ভিরিডিস ১৯১৩ এন জে ভার সগিত্তিফের ১৯১৩ ১৯৪০ সালে ম্যালকম আর্থার স্মিথ মনোকলড কোবরাকে ট্রাইনোমিয়াল নাজা নাজা কৌথিয়ার অধীনে স্পেকটাকলড কোবরার উপ-প্রজাতি হিসাবে শ্রেণীবদ্ধ করেন। ১৯৯০ এর দশকে পুনশ্রেণীকরণের সময়ে Naja kaouthia কে আলাদা করা হয় Naja siamensis প্রজাতি থেকে। নাজা সিয়ামেনসিস নামটি সাধারণভাবে পুরোনো শ্রেণীকরণ অনুযায়ী গবেষণায় ব্যবহৃত একটি কমন নাম ছিল। থাইল্যান্ডে ফাইলোজেনেটিক গবেষণায় নাজা কৌথিয়া প্রজাতির বিস্ময়কর প্রকরণ প্রদর্শিত হয়েছে। অন্যান্য এশিয়াটিক কোবরার সঙ্গে প্রজাতির বিস্ময়কর প্যারাফাইলেটিক প্রকরণ রয়েছে। বৈশিষ্ট্য গোক্ষুর গোখরার ইংরেজি ও অক্ষরের মত ফণা রয়েছে যা প্রায় খইয়া বা খড়মপায়া গোখরার কাছাকাছি। ছোট সাপের রং স্থিত থাকে। গায়ে হলুদ, বাদামি, ছাই বা কাল ধরনের রংয়ের সাথে ক্রসব্যান্ড দেখা যায়। ফণার দুই ধারে নিচের দিকে কাল ছোপ দেখতে পাওয়া যায় এবং একটি বা দুটি ক্রস আকারের রেখা কালো ছোপের পেছন থেকে পেটের দিকে নামে। বয়সের সাথে সাথে সাপের গায়ের রং ফিকে হতে শুরু করে। এর দুটি সরু, লম্বা বিষ দাঁত আছে। সবচেয়ে বড় বিষ দাঁতের রেকর্ড হল । বিষদাঁতগুলো বিষছুঁড়ে মারার জন্য কিছুটা উপযুক্ত। পূর্ণ বয়স্ক গোক্ষুর গোখরা প্রায় হয়, লেজ সহ তা দাঁড়ায় প্রায় । আরো অনেক বড় প্রজাতি পাওয়া গেছে তবে তা খুব বিরল। পূর্ণ বয়স্ক হলে এরা লম্বায় প্রায় হয়। বিস্তৃতি ও আবাস গোক্ষুর গোখরা পাওয়া যায় ভারত এর পশ্চিম থেকে চীন, ভিয়েতনাম এবং কম্বোডিয়াতে। মালয় দ্বীপপুঞ্জ, বাংলাদেশ, ভুটান, মিয়ানমার, লাওস, নেপাল ও থাইল্যান্ড এদের আদি নিবাস। আচরণ এরা নিশাচর। মানুষের বসতবাড়ির আশেপাশে, চাষের জমি, বনাঞ্চল বা ধানক্ষেতের আশেপাশের ইদুরের গর্তে থাকতে ভালবাসে। শিশু গোক্ষুর গোখরা উভচর প্রাণী আর বড়গুলো স্তন্যপায়ী প্রাণি, সাপ বা মাছ শিকার করে। যখন বিরক্ত হয় পালাতে পছন্দ করে। কিন্তু যদি তার কাছে কাউকে প্রাণ সংশয়কারী মনে হয় তাহলে ফণা তুলে জোরে হিস হিস শব্দ করে। আত্মরক্ষার্থে কামড়ও দিতে পারে। বাস্তুসংস্থান এগুলোকে গাছের গুঁড়ির গর্ত বা যেখানে ইঁদুর রয়েছে এমন স্থানে পাওয়া যায়। কিছু কিছু গোক্ষুর গোখরার বিষ নিক্ষেপ করার ক্ষমতা রয়েছে। আরও দেখুন সর্পদংশন তথ্যসূত্র আরো পড়ুন Wüster, W. Thorpe, R.S. (1991). Asiatic cobras: Systematics and snakebite. Experientia 47: 205–209 বহিঃসংযোগ The Asiatic Cobra Systematics Page Clinical Toxinology Resources : Naja kaouthia Thailand Snakes : Naja kaouthia এলাপিডি বাংলাদেশের সরীসৃপ ভারতের সরীসৃপ নাজা ১৮৩১-এ বর্ণিত সরীসৃপ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রাণিকুল ভুটানের সরীসৃপ কম্বোডিয়ার সরীসৃপ লাওসের সরীসৃপ নেপালের সরীসৃপ চীনের সাপ ভিয়েতনামের সাপ
https://en.wikipedia.org/wiki/Monocled_cobra
Monocled cobra
The monocled cobra (Naja kaouthia), also called monocellate cobra and Indian spitting cobra, is a venomous cobra species widespread across South and Southeast Asia and listed as Least Concern on the IUCN Red List.
1310
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE
কলম্বিয়া
কলম্বিয়া (স্পেনীয় ভাষায়: Colombia কোলোম্বিয়া) বা কলম্বিয়া প্রজাতন্ত্র (República de Colombia রেপুব্লিকা দ়ে কোলোম্বিয়া) দক্ষিণ আমেরিকার উত্তর-পশ্চিম অংশে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। কলম্বিয়ার প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে আছে নয়নাভিরাম সমুদ্র সৈকত, পর্বতমালা এবং নিবিড় সবুজ অতিবৃষ্টি অরণ্য। কিন্তু রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা এবং শক্তিশালী মাদক চোরাকারবারী চক্রের প্রভাবে দেশটি আন্তর্জাতিক অঙ্গনে কুখ্যাতি অর্জন করেছে। যদিও দেশটির গণতান্ত্রিক সরকারব্যবস্থার ইতিহাস পুরনো, তা সত্ত্বেও দেশটিতে লাতিন আমেরিকার দেশগুলির মধ্যে সবচেয়ে বেশি শ্রেণীবৈষম্যমূলক একটি সমাজ বিদ্যমান। কলম্বিয়া দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র দেশ যার ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর---উভয় জলভাগেই তটরেখা আছে। কলম্বিয়ার পূর্বে ভেনেজুয়েলা ও ব্রাজিল, দক্ষিণে ইকুয়েডর ও পেরু, এবং উত্তর-পশ্চিমে পানামা। বোগোতা দেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। আমেরিকা মহাদেশদ্বয়ে ইউরোপীয়দের আগমনের আগে বর্তমান কলম্বিয়া যেখানে অবস্থিত, সেই অঞ্চলটিতে বেশ কিছু আদিবাসী আমেরিকান জাতি বাস করত। এদের মধ্যে চিবচা জাতি অন্যতম। ১৬শ শতক থেকে ১৯শ শতক পর্যন্ত কলম্বিয়া স্পেনের একটি উপনিবেশ ছিল। ১৮১৯ সালে দেশটি স্বাধীনতা লাভ করে। স্বাধীনতার পরে এটি একটি নির্বাচিত সরকার-শাসিত প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়। কলম্বীয় সমাজ উচ্চ ও নিম্ন শ্রেণীতে বিভক্ত এবং এদের মধ্যে বর্ধমান শ্রেণীবৈষম্য বিদ্যমান। ২০শ শতকে দেশটির কফিভিত্তিক অর্থনীতির সাথে সম্পর্কিত ভূমিগুলির মালিকানা সম্প্রসারণের ফলে একটি উল্লেখযোগ্য মধ্যবিত্ত শ্রেণীর উদ্ভব ঘটে। ১৬শ শতকের স্পেনীয় সমাজব্যবস্থা থেকে কলম্বিয়ার প্রকট শ্রেণীবৈষম্যের বীজ বপিত হয় এবং ঔপনিবেশিক আমলে এটি কলম্বীয় সমাজের সাথে অঙ্গীভূত হয়ে যায়। পারিবারিক বংশপরম্পরা, উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত সম্পদ, এবং জাতিগত পটভূমি কলম্বিয়াতে কোন ব্যক্তির সামাজিক মর্যাদা নিয়ন্ত্রণ করে। বিগত ১০০ বছরে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ঘটলেও রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক ক্ষমতা একটি ক্ষুদ্র বিত্তশালী শ্রেণীর হাতে কুক্ষিগত। ২০শ শতকের মধ্যভাগে গৃহযুদ্ধ কলম্বিয়ার সমাজব্যবস্থাকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। বামপন্থী গেরিলা ও আধা-সামরিক বাহিনী এবং কলম্বিয়ার সেনাবাহিনীর মধ্যে দেশের গ্রামাঞ্চলে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়। একই সময়ে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও অন্যান্য ধনী শিল্পোন্নত দেশগুলিতে মাদকদ্রব্যের, বিশেষত কোকেনের চাহিদার ফলে কলম্বিয়াতে অবৈধ মাদক চোরাচালান ব্যবসা প্রসার লাভ করে। কলম্বীয় সরকার মাদক উৎপাদন সীমিত করার এবং বিরোধী গেরিলা বাহিনীর সাথে শান্তিপূর্ণ সমঝোতার চেষ্টা করে যাচ্ছে। ২১শ শতকের শুরুতে এসেও সহিংসতা কলম্বীয় নাগরিকদের জীবনের নিত্যনৈমিত্যিক ঘটনা ছিল। ইতিহাস প্রাক কলম্বিয়ান যুগ এর অবস্থানের কারণে, কলম্বিয়ার বর্তমান অঞ্চলটি মেসোআমেরিকা এবং ক্যারিবিয়ান থেকে আন্দিজ এবং আমাজন অববাহিকা পর্যন্ত প্রাথমিক মানব সভ্যতার একটি করিডোর ছিল। প্রাচীনতম প্রত্নতাত্ত্বিক আবিষ্কারগুলি বোগোটা থেকে ১০০ কিলোমিটার (৬২ মাইল) দক্ষিণ-পশ্চিমে ম্যাগডালেনা উপত্যকার পুবেনজা এবং এল টোটুমো সাইটগুলি থেকে পাওয়া যায়। এই সাইটগুলি প্যালিওইন্ডিয়ান সময়কালের (১৮০০০-৮০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে) । পুয়ের্তো হরমিগা এবং অন্যান্য স্থানে, প্রাচীন যুগের (৮০০০-২০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে ) চিহ্ন পাওয়া গেছে। ভেস্টিজগুলি ইঙ্গিত দেয় যে কুন্দিনামার্কার এল আবরা এবং টেকেন্ডামা অঞ্চলেও প্রাথমিক দখল ছিল। আমেরিকায় আবিষ্কৃত প্রাচীনতম মৃৎপাত্র, সান জাকিন্টোতে পাওয়া যায়, যা ৫০০০-৪০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের। ১২,৫০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে আদিবাসীরা এখনকার কলম্বিয়া অঞ্চলে বসবাস করত। বর্তমান বোগোটার কাছে এল আবরা, টিবিটো এবং টেকেন্ডামা সাইটে যাযাবর শিকারী-সংগ্রাহক উপজাতিরা একে অপরের সাথে এবং ম্যাগডালেনা নদী উপত্যকার অন্যান্য সংস্কৃতির সাথে ব্যবসা করত। Serranía de la Lindosa-তে অধ্যয়নরত আট মাইল (১৩ কিমি) পিকটোগ্রাফ সহ একটি সাইট নভেম্বর ২০২০ সালে প্রকাশিত হয়েছিল। তাদের বয়স ১২,৫০০ বছর (আনুমানিক১০,৪৮০ খ্রিস্টপূর্বাব্দ) হিসাবে বিলুপ্তপ্রায় প্রাণীর চিত্রিত কারণে সাইটে কাজ করা নৃবিজ্ঞানীদের দ্বারা প্রস্তাবিত। যেটি এখন কলম্বিয়া নামে পরিচিত এই এলাকার প্রাচীনতম পরিচিত মানুষের দখলের সময় হতো।[উদ্ধৃতি প্রয়োজন] ৫০০০এবং ১০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দের মধ্যে শিকারী-সংগ্রাহক উপজাতিরা কৃষিভিত্তিক সমাজে রূপান্তরিত হয়েছিল; স্থায়ী বসতি স্থাপন করা হয়, এবং মৃৎপাত্র আবির্ভূত হয়. খ্রিস্টপূর্ব 1ম সহস্রাব্দের শুরুতে, মুইসকা, জেনু, কুইম্বায়া এবং তাইরোনা সহ আমেরিন্ডিয়ানদের দল ক্যাসিকদের নেতৃত্বে ক্ষমতার একটি পিরামিড কাঠামোর সাথে ক্যাসিকাজগোসের রাজনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলে। মুইসকা প্রধানত সেই অঞ্চলে বাস করত যা এখন বয়াকা এবং কুন্দিনামার্কা উচ্চ মালভূমি (আল্টিপ্লানো কুন্ডিবোয়াসেনস) বিভাগ যেখানে তারা মুইসকা কনফেডারেশন গঠন করেছিল। তারা ভুট্টা, আলু, কুইনোয়া এবং তুলা চাষ করত এবং প্রতিবেশী দেশগুলির সাথে সোনা, পান্না, কম্বল, সিরামিক হস্তশিল্প, কোকা এবং বিশেষ করে রক লবণের ব্যবসা করত। তাইরোনা উত্তর কলম্বিয়ার সিয়েরা নেভাদা দে সান্তা মার্তার বিচ্ছিন্ন পর্বতশ্রেণীতে বসবাস করত। কলম্বিয়ান আন্দিজের পশ্চিম ও মধ্য রেঞ্জের মধ্যবর্তী কউকা নদী উপত্যকার অঞ্চলে কুইম্বায়া বসবাস করত। বেশিরভাগ আমেরিন্ডিয়ানরা কৃষিকাজ করত এবং প্রতিটি আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামাজিক কাঠামো আলাদা ছিল। আদিবাসীদের কিছু গোষ্ঠী যেমন ক্যারিবরা স্থায়ী যুদ্ধের অবস্থায় বাস করত, কিন্তু অন্যদের মধ্যে ছিল কম বর্বর মনোভাব ঔপনিবেশিক সময় আলোনসো ডি ওজেদা (যিনি কলম্বাসের সাথে যাত্রা করেছিলেন) ১৪৯৯ সালে গুয়াজিরা উপদ্বীপে পৌঁছেছিলেন। রদ্রিগো ডি বাস্তিদাসের নেতৃত্বে স্প্যানিশ অভিযাত্রীরা ১৫০০ সালে ক্যারিবিয়ান উপকূলে প্রথম অনুসন্ধান করেন। ক্রিস্টোফার কলম্বাস ১৫০২ সালে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জের কাছাকাছি নেভিগেট করেছিলেন . ১৫০৮ সালে ভাস্কো নুনেজ ডি বালবোয়া উরাবা উপসাগরের অঞ্চলের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে একটি অভিযানের সাথে যান এবং তিনি ১৫১০ সালে সান্তা মারিয়া লা অ্যান্টিগুয়া দেল দারিয়েন শহরটি প্রতিষ্ঠা করেন। এটি ছিল এই মহাদেশের প্রথম স্থিতিশীল বসতি। সান্তা মার্টা ১৫২৫ সালে, এবং ১৫৩৩ সালে কার্টেজেনা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। স্প্যানিশ বিজয়ী গঞ্জালো জিমেনেজ দে কুয়েসাদা ১৫৩৬ সালের এপ্রিল মাসে অভ্যন্তরীণ একটি অভিযানের নেতৃত্ব দেন এবং যে জেলার মধ্য দিয়ে তিনি "গ্রানাডার নতুন রাজ্য" অতিক্রম করেন তার নামকরণ করেন। ১৫৩৮ সালের আগস্টে, তিনি অস্থায়ীভাবে এটির রাজধানী মুয়কুইতার মুইসকা ক্যাসিকাজগোর কাছে প্রতিষ্ঠা করেন এবং এর নাম দেন "সান্তা ফে"। নামটি শীঘ্রই একটি প্রত্যয় অর্জন করে এবং সান্তা ফে দে বোগোটা নামে পরিচিত হয়। প্রারম্ভিক বিজয়ীদের দ্বারা অভ্যন্তরে আরও দুটি উল্লেখযোগ্য যাত্রা একই সময়ে হয়েছিল। কুইটোর বিজয়ী সেবাস্তিয়ান দে বেলালকাজার উত্তর ভ্রমণ করেন এবং ১৫৩৬ সালে ক্যালি প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৫৩৭ সালে পোপায়ান প্রতিষ্ঠা করেন; ১৫৩৬ থেকে ১৫৩৯ সাল পর্যন্ত, জার্মান বিজয়ী নিকোলাস ফেডারম্যান ল্লানোস ওরিয়েন্টালস অতিক্রম করেন এবং এলানাস কর্ডিলের সন্ধানে প্রাচ্যের দিকে যান। ডোরাডো, "সোনার শহর"। কিংবদন্তি সোনা ১৫ এবং ১৭ শতকে স্প্যানিশ এবং অন্যান্য ইউরোপীয়দের নিউ গ্রানাডায় প্রলুব্ধ করার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিজয়ীরা বিভিন্ন আদিবাসী সম্প্রদায়ের শত্রুদের সাথে ঘন ঘন মিত্রতা তৈরি করেছিল। আদিবাসী মিত্ররা জয়ের পাশাপাশি সাম্রাজ্য তৈরি ও বজায় রাখার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ছিল। নিউ গ্রানাডার আদিবাসীরা বিজয়ের কারণে জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছে এবং সেইসাথে ইউরেশিয়ান রোগ যেমন গুটিবসন্তের কারণে তাদের কোন অনাক্রম্যতা ছিল না। ভূমিকে নির্জন হিসাবে বিবেচনা করে, স্প্যানিশ ক্রাউন ঔপনিবেশিক অঞ্চলে আগ্রহী সকল ব্যক্তির কাছে সম্পত্তি বিক্রি করে, বড় খামার তৈরি করে এবং খনি দখল করে। ১৬ শতকে, কাসা ডি কনট্রাটাসিওনের অসংখ্য বৈজ্ঞানিক পরিসংখ্যানের জন্য স্পেনে নটিক্যাল বিজ্ঞান একটি দুর্দান্ত বিকাশে পৌঁছেছিল এবং নটিক্যাল সায়েন্স ছিল আইবেরিয়ান সম্প্রসারণের একটি অপরিহার্য স্তম্ভ। ১৫৪২ সালে, দক্ষিণ আমেরিকার অন্যান্য সমস্ত স্প্যানিশ সম্পত্তির সাথে নিউ গ্রানাডা অঞ্চলটি পেরুর ভাইসরয়্যালিটির অংশ হয়ে ওঠে, যার রাজধানী ছিল লিমায়। ১৫৪৭ সালে নিউ গ্রানাডা ভাইসরয়্যালিটির মধ্যে একটি পৃথক অধিনায়ক-জেনারেল হয়ে ওঠে, যার রাজধানী সান্তা ফে দে বোগোটা ছিল। ১৫৪৯ সালে, রয়্যাল অডিয়েন্সিয়া একটি রাজকীয় ডিক্রি দ্বারা তৈরি করা হয়েছিল, এবং নিউ গ্রানাডা সান্তা ফে দে বোগোটার রাজকীয় শ্রোতাদের দ্বারা শাসিত হয়েছিল, যা সেই সময়ে সান্তা মার্তা, রিও দে সান জুয়ান, পোপায়ান, গুয়ানা এবং কার্টেজেনা প্রদেশগুলি নিয়ে গঠিত ছিল। কিন্তু উপনিবেশ থেকে স্পেন পর্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গৃহীত হয় কাউন্সিল অফ দ্য ইন্ডিজের মাধ্যমে। স্বাধীনতা বিজয় এবং ঔপনিবেশিকতার সময়কালের শুরু থেকে স্প্যানিশ শাসনের বিরুদ্ধে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট বিদ্রোহী আন্দোলন হয়েছিল, কিন্তু এগুলোর বেশিরভাগই সামগ্রিক পরিস্থিতি পরিবর্তন করতে খুব দুর্বল ছিল। সর্বশেষ যেটি স্পেনের কাছ থেকে সম্পূর্ণ স্বাধীনতা চাওয়া হয়েছিল তা ১৮১০ সালের দিকে ছড়িয়ে পড়ে এবং ২০ জুলাই ১৮১০ তারিখে জারি করা কলম্বিয়ান স্বাধীনতার ঘোষণায় পরিণত হয়, যে দিনটি এখন দেশের স্বাধীনতা দিবস হিসাবে পালিত হয়। এই আন্দোলনটি ১৮০৪ সালে সেন্ট ডোমিংগুয়ের (বর্তমান হাইতি) স্বাধীনতা অনুসরণ করে, যা এই বিদ্রোহের একজন চূড়ান্ত নেতা সিমন বলিভার কে কিছু সমর্থন প্রদান করেছিল:। এক্ষেত্রে ফ্রান্সিসকো ডি পলা স্যান্টান্ডারও একটি নির্ধারক ভূমিকা পালন করেছিল। আন্তোনিও নারিনো একটি আন্দোলনের সূচনা করেছিলেন, যিনি স্প্যানিশ কেন্দ্রিকতার বিরোধিতা করেছিলেন এবং ভাইসরয়্যালিটির বিরুদ্ধে বিরোধিতার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। কার্টেজেনা ১৮১১ সালের নভেম্বরে স্বাধীন হয়। ১৮১১ সালে, ক্যামিলো টরেস টেনোরিওর নেতৃত্বে নিউ গ্রানাডা ইউনাইটেড প্রদেশ ঘোষণা করা হয়। দেশপ্রেমিকদের মধ্যে দুটি স্বতন্ত্র আদর্শিক স্রোতের উত্থান (ফেডারেলিজম এবং কেন্দ্রীয়তা) অস্থিতিশীলতার সময়কালের জন্ম দেয়। নেপোলিয়নিক যুদ্ধ শেষ হওয়ার কিছুক্ষণ পরে, ফার্দিনান্দ সপ্তম, সম্প্রতি স্পেনের সিংহাসনে পুনরুদ্ধার করেন, অপ্রত্যাশিতভাবে উত্তর দক্ষিণ আমেরিকার বেশিরভাগ অংশ পুনরুদ্ধার করতে সামরিক বাহিনী পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন। হুয়ান সামানোর নেতৃত্বে ভাইসরয়্যালিটি পুনরুদ্ধার করা হয়েছিল, যার শাসনামল জান্তাদের রাজনৈতিক সূক্ষ্মতা উপেক্ষা করে দেশপ্রেমিক আন্দোলনে অংশগ্রহণকারীদের শাস্তি দিত। প্রতিশোধের ফলে নতুন করে বিদ্রোহ শুরু হয়, যা একটি দুর্বল স্পেনের সাথে মিলিত হয়ে ভেনেজুয়েলা-জন্মত সিমন বলিভারের নেতৃত্বে একটি সফল বিদ্রোহ সম্ভব করে তোলে, যিনি অবশেষে ১৮১৯ সালে স্বাধীনতা ঘোষণা করেছিলেন। ১৮২২ সালে স্প্যানিশপন্থী প্রতিরোধ কলম্বিয়ার বর্তমান ভূখণ্ডে এবং ১৮২৩ সালে ভেনেজুয়েলায় পরাজিত হয়। নিউ গ্রানাডার ভাইসরয়্যালিটির অঞ্চলটি কলম্বিয়া প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয়, যা কলম্বিয়া, পানামা, ইকুয়েডর, ভেনিজুয়েলা, গায়ানা এবং ব্রাজিলের কিছু অংশ এবং মারানন নদীর উত্তরের বর্তমান অঞ্চলগুলির একটি ইউনিয়ন হিসাবে সংগঠিত হয়। ১৮২১ সালে কুকুটার কংগ্রেস নতুন প্রজাতন্ত্রের জন্য একটি সংবিধান গ্রহণ করে। সিমন বলিভার কলম্বিয়ার প্রথম রাষ্ট্রপতি হন, এবং ফ্রান্সিসকো ডি পলা স্যান্টান্ডারকে ভাইস প্রেসিডেন্ট করা হয়। যাইহোক, নতুন প্রজাতন্ত্র অস্থিতিশীল ছিল এবং গ্রান কলম্বিয়া শেষ পর্যন্ত ভেঙে পড়ে। আধুনিক কলম্বিয়া গ্রান কলম্বিয়ার বিলুপ্তির পর উদ্ভূত দেশগুলির একটি থেকে এসেছে, অন্য দুটি হচ্ছে ইকুয়েডর এবং ভেনিজুয়েলা। কলম্বিয়া ছিল দক্ষিণ আমেরিকার প্রথম সাংবিধানিক সরকার,১৮৪৮ এবং ১৮৪৯ সালে প্রতিষ্ঠিত লিবারেল এবং রক্ষণশীল দলগুলি যথাক্রমে আমেরিকার দুটি প্রাচীনতম টিকে থাকা রাজনৈতিক দল। ১৮৫১ সালে দেশে দাসপ্রথা বিলুপ্ত হয়। অভ্যন্তরীণ রাজনৈতিক এবং আঞ্চলিক বিভাজন ১৮৩০ সালে গ্রান কলম্বিয়ার বিলুপ্তির দিকে পরিচালিত করে। তথাকথিত "কুন্ডিনামার্কা বিভাগ" "নতুন গ্রানাডা" নামটি গ্রহণ করে, যা ১৮৫৮ সাল পর্যন্ত রেখেছিল যখন এটি "কনফেডারেশন গ্রানাডিনা" (গ্রানাডাইন কনফেডারেশন) হয়ে ওঠে। ১৮৬৩ সালে দুই বছরের গৃহযুদ্ধের পর, "ইউনাইটেড স্টেটস অফ কলোম্বিয়া" তৈরি করা হয়েছিল, যা ১৮৮৬ সাল পর্যন্ত স্থায়ী হয়েছিল, যখন দেশটি অবশেষে কলম্বিয়া প্রজাতন্ত্র হিসাবে পরিচিত হয়। তবে তখনোও দ্বিদলীয় রাজনৈতিক শক্তির মধ্যে অভ্যন্তরীণ বিভাজন রয়ে গেছে, যা মাঝে মাঝেই খুব রক্তক্ষয়ী গৃহযুদ্ধ প্রজ্বলিত করে এবং এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে তাৎপর্যপূর্ণ ছিল হাজার দিনের যুদ্ধ (১৮৯৯-১৯০২)। বিংশ শতাব্দী মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এলাকা প্রভাবিত করার অভিপ্রায় (বিশেষ করে পানামা খাল নির্মাণ ও নিয়ন্ত্রণ) ১৯০৩ সালে পানামা বিভাগকে বিচ্ছিন্ন করে এবং একটি জাতি হিসাবে এটিকে প্রতিষ্ঠিত করে। পানামা সৃষ্টিতে প্রেসিডেন্ট রুজভেল্টের ভূমিকার প্রতিকারের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯২১ সালে কলম্বিয়াকে $25,000,000 অর্থ প্রদান করে, এবং খালটি সম্পূর্ণ হওয়ার সাত বছর পরে, এবং কলম্বিয়া থমসন-উরুতিয়া চুক্তির শর্তাবলীর অধীনে পানামাকে স্বীকৃতি দেয়। কলম্বিয়া এবং পেরু আমাজন অববাহিকায় অঞ্চল বিরোধের কারণে যুদ্ধে নেমেছিল। লিগ অফ নেশনস এর মধ্যস্থতায় একটি শান্তি চুক্তির মাধ্যমে যুদ্ধের সমাপ্তি ঘটে। লীগ অবশেষে ১৯৩৪ সালের জুন মাসে কলম্বিয়াকে বিতর্কিত এলাকা ঘোষনা করে। ১৯৬০ এর দশকের গোড়ার দিকে মার্কিন সরকার কলম্বিয়ার সামরিক বাহিনীকে গ্রামীণ কলম্বিয়ার বামপন্থী মিলিশিয়াদের উপর আক্রমণ করার জন্য উত্সাহিত করেছিল তখন থেকেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই সংঘাতে ব্যাপকভাবে জড়িত ছিল। এটি ছিল কমিউনিজমের বিরুদ্ধে মার্কিন লড়াইয়ের অংশ। ভাড়াটে এবং বহুজাতিক কর্পোরেশন যেমন চিকুইটা ব্র্যান্ডস ইন্টারন্যাশনাল হল কিছু আন্তর্জাতিক অভিনেতা যারা সংঘর্ষের সহিংসতায় অবদান রেখেছে। ১৯৭০-এর দশকের মাঝামাঝি থেকে কলম্বিয়ার ড্রাগ কার্টেলগুলি প্রধানত গাঁজা এবং কোকেনের অবৈধ ওষুধের প্রধান উৎপাদক, প্রসেসর এবং রপ্তানিকারক হয়ে ওঠে। ১৯৯১ সালের ৪ জুলাই একটি নতুন সংবিধান জারি করা হয়। নতুন সংবিধান দ্বারা উত্পন্ন পরিবর্তনগুলি কলম্বিয়ার সমাজ দ্বারা ইতিবাচক হিসাবে দেখা হয়। একুশ শতক রাষ্ট্রপতি আলভারো উরিবের প্রশাসন (২০০২-২০১০) গণতান্ত্রিক নিরাপত্তা নীতি গ্রহণ করেছিল যার মধ্যে একটি সমন্বিত সন্ত্রাসবাদ এবং বিদ্রোহ বিরোধী অভিযান অন্তর্ভুক্ত ছিল। সরকারী অর্থনৈতিক পরিকল্পনা বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থা উন্নীত করেছে। একটি বিতর্কিত শান্তি প্রক্রিয়ার অংশ হিসাবে, AUC (ডানপন্থী আধাসামরিক বাহিনী) একটি সংগঠন হিসাবে আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ করা বন্ধ করে দিয়েছিল। কিউবায় শান্তি আলোচনার পর, প্রেসিডেন্ট জুয়ান ম্যানুয়েল সান্তোসের কলম্বিয়ান সরকার এবং FARC-EP-এর গেরিলারা সংঘাতের অবসান ঘটাতে একটি চূড়ান্ত চুক্তি ঘোষণা করে। যাইহোক, চুক্তিটি অনুমোদনের জন্য একটি গণভোট ব্যর্থ হয়েছিল। পরবর্তীতে, কলম্বিয়ান সরকার এবং FARC নভেম্বর ২০১৬ সালে একটি সংশোধিত শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করে, যা কলম্বিয়ান কংগ্রেস অনুমোদন করে। ২০১৬ সালে, রাষ্ট্রপতি সান্তোস নোবেল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হন। সরকার সংঘাতের শিকারদের জন্য মনোযোগ এবং ব্যাপক ক্ষতিপূরণের প্রক্রিয়া শুরু করে। কলম্বিয়া মানবাধিকার রক্ষার সংগ্রামে পরিমিত অগ্রগতি দেখায়, যেমন HRW দ্বারা প্রকাশ করা হয়েছে। গুরুতর মানবাধিকার লঙ্ঘন এবং সশস্ত্র সংঘাতের সময় সংঘটিত আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের গুরুতর লঙ্ঘনের তদন্ত, স্পষ্টকরণ, বিচার এবং শাস্তির জন্য শান্তির একটি বিশেষ এখতিয়ার তৈরি করা হয়েছে এবং ক্ষতিগ্রস্তদের ন্যায়বিচারের অধিকারকে সন্তুষ্ট করার জন্য কলম্বিয়া সফরকালে পোপ ফ্রান্সিস সংঘর্ষে নিহতদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। ভূগোল কলম্বিয়া দক্ষিণ আমেরিকার একমাত্র দেশ যার ক্যারিবীয় সাগর ও প্রশান্ত মহাসাগর---উভয় জলভাগেই তটরেখা আছে। কলম্বিয়ার পূর্বে ভেনেজুয়েলা ও ব্রাজিল, দক্ষিণে ইকুয়েডর ও পেরু, এবং উত্তর-পশ্চিমে পানামা। বোগোতা দেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। সংস্কৃতি কলম্বিয়ান রেফারি উইলমার রোলদান বিশ্বের অন্যতম সেরা ফুটবল রেফারি হিসেবে গণ্য । তথ্যসূত্র স্পেনীয় ভাষী রাষ্ট্র ও অঞ্চল দক্ষিণ আমেরিকার রাষ্ট্র ওইসিডি সদস্য আন্তঃমহাদেশীয় রাষ্ট্র প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র প্রজাতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Colombia
Colombia
Colombia, officially the Republic of Colombia, is a country primarily located in South America with insular regions in North America. The Colombian mainland is bordered by the Caribbean Sea to the north, Venezuela to the east and northeast, Brazil to the southeast, Ecuador and Peru to the south and southwest, the Pacific Ocean to the west, and Panama to the northwest. Colombia is divided into 32 departments. The Capital District of Bogotá is also the country's largest city hosting the main financial and cultural hub. Other major urbes include Medellín, Cali, Barranquilla, Cartagena, Santa Marta, Cúcuta, Ibagué, Villavicencio and Bucaramanga. It covers an area of 1,141,748 square kilometers (440,831 sq mi) and has a population of around 52 million. Its rich cultural heritage—including language, religion, cuisine, and art—reflects its history as a colony, fusing cultural elements brought by immigration from Europe and the Middle East, with those brought by the African diaspora, as well as with those of the various Indigenous civilizations that predate colonization. Spanish is the official language, although Creole, English and 64 other languages are recognized regionally. Colombia has been home to many indigenous peoples and cultures since at least 12,000 BCE. The Spanish first landed in La Guajira in 1499, and by the mid-16th century, they had colonized much of present-day Colombia, and established the New Kingdom of Granada, with Santa Fé de Bogotá as its capital. Independence from the Spanish Empire was achieved in 1819, with what is now Colombia emerging as the United Provinces of New Granada. The new polity experimented with federalism as the Granadine Confederation (1858) and then the United States of Colombia (1863), before becoming a republic—the current Republic of Colombia—in 1886. With the backing of the United States and France, Panama seceded from Colombia in 1903, resulting in Colombia's present borders. Beginning in the 1960s, the country has suffered from an asymmetric low-intensity armed conflict and political violence, both of which escalated in the 1990s. Since 2005, there has been significant improvement in security, stability, and rule of law, as well as unprecedented economic growth and development. Colombia is recognized for its healthcare system, being the best healthcare in Latin America according to the World Health Organization and 22nd in the world. Its diversified economy is the third-largest in South America, with macroeconomic stability and favorable long-term growth prospects. Colombia is one of the world's seventeen megadiverse countries; it has the highest level of biodiversity per square mile in the world and the second-highest level overall. Its territory encompasses Amazon rainforest, highlands, grasslands and deserts. It is the only country in South America with coastlines (and islands) along both the Atlantic and Pacific oceans. Colombia is a key member of major global and regional organizations including the UN, the WTO, the OECD, the OAS, the Pacific Alliance and the Andean Community; it is also a NATO Global Partner and a major non-NATO ally of the United States.
1311
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B0%E0%A6%82%20%28%E0%A6%AC%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A3%29
রং (বর্ণ)
রং বা বর্ণ () হল মানুষের দৃষ্টি-সংক্রান্ত একটি চিরন্তন ধর্ম। দৃশ্যমান আলোর কম্পাঙ্ক থেকে রং উৎপত্তি লাভ করে। বিভিন্ন কারণে মানুষের কাছে রঙের পার্থক্য হয়ে থাকে। সাধারণত বলা হয়ে থাকে মৌলিক রং তিনটি, যথা - লাল,নীল ও হলুদ। তবে এর মাঝে কিছু পার্থক্যও আছে । কিছু কিছু মুদ্রনের ক্ষেত্রে লাল,নীল ও সবুজ বলা হয়ে থাকে। রঙের বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যা তড়িৎ-চুম্বকীয় বিকিরণের সাধারণ ধৰ্মসমূহ হচ্ছে তরঙ্গদৈৰ্ঘ্য, কম্পাংক ও এর দ্বীপন প্ৰাবল্য। যত বিকিরণ তরঙ্গ‌দৈৰ্ঘ্য দৃশ্যমান বৰ্ণালীর সীমার ভিতরে থাকে ততটুকু মানব চক্ষুতে বিভিন্ন রং হিসেবে দেখা যায়। দৃশ্যমান বৰ্ণালীর সীমা প্ৰায় ৩৯০ ন্যানোমিটার থেকে ৭০০ ন্যানোমিটার। একে দৃশ্যমান আলো বলা হয়। সব আলোর উৎস‍ই সাধারণত একসঙ্গে বিভিন্ন তরঙ্গ‌দৈৰ্ঘ্যের আলো নিৰ্গত করে কোনো একটা উৎসের বৰ্ণালীতে এর পরে নিৰ্গত বিভিন্ন তরঙ্গদৈৰ্ঘ্যের আলোর প্ৰাবল্যের তথ্য দিয়ে। বৰ্ণালীর রঙ বর্ণালীর রামধনুর পরিচিত রঙগুলি আইজ্যাক নিউটন ১৬৭১ সালে লাতিন শব্দটির উপস্থিতি বা সংশ্লেষের জন্য ব্যবহার করেছেন যা সেই সমস্ত রঙের অন্তর্ভুক্ত যা কেবলমাত্র একক তরঙ্গ দৈর্ঘ্যের দৃশ্যমান আলো দ্বারা উৎপাদিত হতে পারে( খাঁটি বর্ণালী বা একরঙা বর্ণগুলি)। ডানদিকে টেবিলটি বিভিন্ন খাঁটি বর্ণালী বর্ণের জন্য আনুমানিক কম্পাঙ্ক (টেরেহার্টজে) এবং তরঙ্গদৈর্ঘ্য (ন্যানোমিটারে) দেখায়। তালিকাভুক্ত তরঙ্গদৈর্ঘ্যগুলি বায়ু বা ভ্যাকুয়াম হিসাবে পরিমাপ করা হয় (রিফ্রেসিভ সূচক দেখুন)। রং টেবিলটিকে একটি নির্দিষ্ট তালিকা হিসাবে ব্যাখ্যা করা উচিত নয় — খাঁটি বর্ণালী বর্ণগুলি একটি ধারাবাহিক বর্ণালী গঠন করে এবং ভাষাগতভাবে এটি কীভাবে পৃথক বর্ণগুলিতে বিভক্ত করা হয় তা সংস্কৃতি এবং ঐতিহাসিক আক্রমণের বিষয় (যদিও সর্বত্র লোকেরা বর্ণগুলি বর্ণ হিসাবে দেখানো হয়েছে) একইভাবে )। একটি সাধারণ তালিকা ছয়টি প্রধান ব্যান্ড সনাক্ত করে: লাল, কমলা, হলুদ, সবুজ, নীল এবং বেগুনি। নিউটনের ধারণায় নীল এবং বেগুনি রঙের মধ্যে একটি সপ্তম রঙ, নীল অন্তর্ভুক্ত ছিল। এটা সম্ভব যে নিউটন যা নীল হিসাবে উল্লেখ করেছেন তা আজ সায়ান হিসাবে পরিচিত, এবং সেই নীলটি কেবল সেই সময় নীল রঙের আমদানি করা নীল রঙের নীল ছিল। বর্ণালী বর্ণের তীব্রতা, এটি যে প্রসঙ্গে দেখা হয়েছে তার সাথে তুলনামূলকভাবে তার উপলব্ধিটি যথেষ্ট পরিবর্তন করতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, কম-তীব্রতার কমলা-হলুদ হল বাদামী এবং কম-তীব্রতার হলুদ-সবুজ হল জলপাই সবুজ। তথ্যসূত্র আরও দেখুন রঙের তালিকা রং (বর্ণ) দর্শন (দৃষ্টি) চিত্র প্রক্রিয়াজাতকরণ দৃষ্টি
https://en.wikipedia.org/wiki/Color
Color
Color (American English) or colour (British and Commonwealth English) is the visual perception based on the electromagnetic spectrum. Though color is not an inherent property of matter, color perception is related to an object's light absorption, reflection, emission spectra, and interference. For most humans, colors are perceived in the visible light spectrum with three types of cone cells (trichromacy). Other animals may have a different number of cone cell types or have eyes sensitive to different wavelengths, such as bees that can distinguish ultraviolet, and thus have a different color sensitivity range. Animal perception of color originates from different light wavelength or spectral sensitivity in cone cell types, which is then processed by the brain. Colors have perceived properties such as hue, colorfulness (saturation), and luminance. Colors can also be additively mixed (commonly used for actual light) or subtractively mixed (commonly used for materials). If the colors are mixed in the right proportions, because of metamerism, they may look the same as a single-wavelength light. For convenience, colors can be organized in a color space, which when being abstracted as a mathematical color model can assign each region of color with a corresponding set of numbers. As such, color spaces are an essential tool for color reproduction in print, photography, computer monitors, and television. The most well-known color models are RGB, CMYK, YUV, HSL, and HSV. Because the perception of color is an important aspect of human life, different colors have been associated with emotions, activity, and nationality. Names of color regions in different cultures can have different, sometimes overlapping areas. In visual arts, color theory is used to govern the use of colors in an aesthetically pleasing and harmonious way. The theory of color includes the color complements; color balance; and classification of primary colors (traditionally red, yellow, blue), secondary colors (traditionally orange, green, purple), and tertiary colors. The study of colors in general is called color science.
1312
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BF%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%9F%E0%A7%8B%E0%A6%AB%E0%A6%BE%E0%A6%B0%20%E0%A6%95%E0%A6%B2%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%B8
ক্রিস্টোফার কলম্বাস
ক্রিস্টোফার কলম্বাস ( ক্রিস্তোফোরুস্‌ কোলুম্বুস্‌; ক্রিস্তোফোরো কোলোম্বো; ক্রিস্তোভ়াল্‌ কোলোন্‌) (আনু. ১৪৫১-মে ২০, ১৫০৬) ছিলেন ইতালীয় নাবিক ও ঔপনিবেশিক। তার আমেরিকা অভিযাত্রা ঐ অঞ্চলে ইউরোপীয়দের উপনিবেশ স্থাপনের সূচনা করেছিল। ইতিহাস ক্রিস্টোফার কলম্বাসের বাংলা নাম আসে ইংরেজি Christopher Colombus ক্রিস্টফার্‌ কলাম্বাস্‌ হতে, যা মূলতঃ লাতিন Christophorus Columbus ক্রিস্তোফোরুস্‌ কোলুম্বুস্‌ হতে এসেছে। ইতালির জেনোয়া শহরে জন্মগ্রহণ করেছিলেন বলে কলম্বাসের আসল নাম ইতালীয় ভাষায় Cristoforo Colombo ক্রিস্তোফোরো কোলোম্বো ছিল, কিন্তু তিনি যখন তৎকালীন ক্যাস্টিল রাজ্যের (বর্তমান স্পেনে) রাণী ইসাবেলের অনুদানে আমেরিকায় অভিযাত্রা করেন, তিনি তার নামের স্পেনীয় রূপ Cristóbal Colón ক্রিস্তোভ়াল্‌ কোলোন্‌ দ্বারা পরিচিত ছিলেন। ক্রিস্টোফার কলম্বাস (১৪৫১-১৫০৬) ইতালির বন্দর শহর জেনোয়া থেকে এসেছিলেন। তরুণ বয়সে তিনি সমুদ্রযাত্রা করেন। ১৪৭৭ সালের দিকে তিনি পর্তুগালের লিসবনে চলে যান। সেখান থেকে তিনি ভূমধ্যসাগর এবং আটলান্টিক মহাসাগরীয় বাণিজ্যিক বন্দরগুলোতে নৌ অভিযান পরিচালনা করেন। ১৪৮৩ সালে পর্তুগালের রাজা জন দ্বিতীয়র কাছে কলম্বাস তার পরিকল্পনা জমা দেন। তাতে ছিল আটলান্টিক হয়ে পশ্চিমের দিকে ইন্ডিজে (এশিয়া) যাওয়ার পরিকল্পনা। রাজা যখন তার পরিকল্পনায় রাজি হলেন না, তখন তিনি তা স্পেনের রাজা ও রাণীর কাছে পেশ করেন। স্পেনের রাজদরবার তার অভিযান অনুমোদন করেন এবং তাকে ইন্ডিজ দ্বীপপুঞ্জের ভাইসরয় হিসাবে নিযোগ দেন। আটলান্টিক অভিযান ১৪৯১ সালে আটলান্টিক অভিযানে তিনি ব্যবহার করেছিলেন ‘রহস্যময়’ এক মানচিত্র। অভিযানের শুরু থেকে পুরো সময়টায় তাকে আলোর দিশা দিয়েছে এই মানচিত্রটি। অন্যকথায় বলা যায়, এই মানচিত্রটিকে ঘিরেই পরিকল্পনা নির্ধারণ করতেন ক্রিস্টোফার কলম্বাস। এই মানচিত্রটি ছিল জার্মান মানচিত্রকার হেনেরিকাস মারটেলাসের তৈরি করা। অবশ্য এই মানচিত্র প্রস্তুতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ছিল আরো কিছু কিংবদন্তীর। বহু পুরনো সেই মানচিত্রটি সময়ের ব্যবধানে এক সময় অনেকটাই নষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কলম্বাস কিউবা আবিষ্কার করেন। আমেরিকা মহাদেশের ঠিক কোথায় কলম্বাস জাহাজ থেকে নেমেছিলেন তা নিয়ে শত শত বছর ধরে বিতর্ক চলেছে। অন্তত ১০টি স্থানের বাসিন্দারা দাবি করেন যে কলম্বাস তাদের সেই জায়গাগুলিতেই প্রথম পদধূলি দেন। তবে আমেরিকায় নামার পর কলম্বাস ভেবেছিলেন তিনি ভারতে পৌঁছেছেন। দ্বিতীয় অভিযাত্রা কলম্বাস তার দ্বিতীয় অভিযাত্রায় ক্যারিবিয়ান সাগরে ডোমিনিকা আবিষ্কার করেন। তথ্যসূত্র ইতালীয় অভিযাত্রী ১৪৫১-এ জন্ম ১৫০৬-এ মৃত্যু ভৌগোলিক আবিষ্কারক ক্যারিবীয় ইতিহাস ইতালীয় রোমান ক্যাথলিক
https://en.wikipedia.org/wiki/Christopher_Columbus
Christopher Columbus
Christopher Columbus (; between 25 August and 31 October 1451 – 20 May 1506) was an Italian explorer and navigator from the Republic of Genoa who completed four Spanish-based voyages across the Atlantic Ocean sponsored by the Catholic Monarchs, opening the way for the widespread European exploration and colonization of the Americas. His expeditions were the first known European contact with the Caribbean and Central and South America. The name Christopher Columbus is the anglicisation of the Latin Christophorus Columbus. Growing up on the coast of Liguria, he went to sea at a young age and travelled widely, as far north as the British Isles and as far south as what is now Ghana. He married Portuguese noblewoman Filipa Moniz Perestrelo, who bore a son, Diego, and was based in Lisbon for several years. He later took a Castilian mistress, Beatriz Enríquez de Arana, who bore a son, Ferdinand. Largely self-educated, Columbus was knowledgeable in geography, astronomy, and history. He developed a plan to seek a western sea passage to the East Indies, hoping to profit from the lucrative spice trade. After the Granada War, and Columbus's persistent lobbying in multiple kingdoms, the Catholic Monarchs, Queen Isabella I and King Ferdinand II, agreed to sponsor a journey west. Columbus left Castile in August 1492 with three ships and made landfall in the Americas on 12 October, ending the period of human habitation in the Americas now referred to as the pre-Columbian era. His landing place was an island in the Bahamas, known by its native inhabitants as Guanahani. He then visited the islands now known as Cuba and Hispaniola, establishing a colony in what is now Haiti. Columbus returned to Castile in early 1493, with captured natives. Word of his voyage soon spread throughout Europe. Columbus made three further voyages to the Americas, exploring the Lesser Antilles in 1493, Trinidad and the northern coast of South America in 1498, and the east coast of Central America in 1502. Many names he gave to geographical features, particularly islands, are still in use. He gave the name indios ("Indians") to the indigenous peoples he encountered. The extent to which he was aware the Americas were a wholly separate landmass is uncertain; he never clearly renounced his belief he had reached the Far East. As a colonial governor, Columbus was accused by some of his contemporaries of significant brutality and removed from the post. Columbus's strained relationship with the Crown of Castile and its colonial administrators in America led to his arrest and removal from Hispaniola in 1500, and later to protracted litigation over the privileges he and his heirs claimed were owed to them by the crown. Columbus's expeditions inaugurated a period of exploration, conquest, and colonization that lasted for centuries, thus bringing the Americas into the European sphere of influence. The transfer of plants, animals, precious metals, culture, human populations, technology, diseases, and ideas between the Old World and New World that followed his first voyage are known as the Columbian exchange. These events and the effects which persist to the present are often cited as the beginning of the modern era. Columbus was widely celebrated in the centuries after his death, but public perception fractured in the 21st century due to greater attention to the harms committed under his governance, particularly the beginning of the depopulation of Hispaniola's indigenous Taíno people, caused by Old World diseases and mistreatment, including slavery. Many places in the Western Hemisphere bear his name, including the South American country of Colombia, the Canadian province of British Columbia, the American city Columbus, Ohio, and the U.S. capital, the District of Columbia.
1318
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%AC%E0%A6%BE
কিউবা
কিউবা (স্পেনীয়: Cuba কুবা) ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের বৃহত্তম ও সবচেয়ে পশ্চিমে অবস্থিত দ্বীপ। দ্বীপটি আশেপাশের অনেকগুলি ছোট দ্বীপের সাথে মিলে কিউবা প্রজাতন্ত্র (República de Cuba রেপুব্লিকা দ়ে কুভ়া) গঠন করেছে। কিউবা উত্তর ও দক্ষিণ আমেরিকার মধ্যস্থলে অবস্থিত। ক্যারিবীয় সাগর ও মেক্সিকো উপসাগরের মধ্য দিয়ে সমস্ত সমুদ্রপথের উপর দেশটি অবস্থিত। কিউবার উত্তরে রয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রও বাহামা দ্বীপপুঞ্জ, পূর্বে টার্ক্‌স ও কেইকোস দ্বীপ এবং হাইতি, পশ্চিমে মেক্সিকো, আর দক্ষিণে জ্যামাইকা ও কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জ। উর্বর ভূমি এবং আখ ও তামাকের ফলনের প্রাচুর্যের ফলে কিউবা ইতিহাসের অধিকাংশ সময় ধরেই ক্যারিবীয় অঞ্চলের সবচেয়ে ধনী রাষ্ট্র। হাভানা কিউবার রাজধানী। কিউবা হাইতি, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, মেক্সিকোর ইউকাতান উপদ্বীপ এবং জ্যামাইকার খুব কাছে অবস্থিত বলে ঐ সব দেশ থেকে কিউবায় প্রচুর লোক যাওয়া-আসা করেন। এই যাতায়াতের ফলে কিউবাতে বহু ধরনের গোষ্ঠী ও সংস্কৃতির সহাবস্থান ঘটেছে। কৃষিতে সমৃদ্ধ হলেও কিউবা খুব কম কৃষিদ্রব্যই রপ্তানি করে, এর মধ্যে আছে চিনি, তামাক, লেবুজাতীয় ফল এবং বিভিন্ন ধরনের উৎপাদিত দ্রব্য। উর্বর ভূমি, অসংখ্য পোতাশ্রয় এবং খনিজের ভাণ্ডারের জন্য দেশটিকে স্পেন, এমনকি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিভিন্ন সময়ে নিজেদের স্বার্থে ব্যবহার করতে চেয়েছে। সোভিয়েত ইউনিয়ন (বর্তমান রাশিয়া) সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র হিসাবে কিউবার প্রতি বন্ধু হিসাবে হাত বাড়িয়ে দেয়। কিউবা ৪০০ বছর ধরে স্পেনের একটি উপনিবেশ ছিল। স্পেনের কনকিস্তাদোরেরা এই দ্বীপকে ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করে মেক্সিকো ও দক্ষিণ আমেরিকাতে আক্রমণ চালাত। ১৯শ শতকের মধ্যভাগে, স্পেনের অধিকাংশ উপনিবেশ স্বাধীনতা লাভ করার বহু দশক পর, কিউবার লোকেরা একটি স্বাধীনতা আন্দোলন গড়ে তোলে। ১৮৬৮ সাল নাগাদ কিউবার লোকেরা তাদের তিনটি স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রথমটিতে লড়া শুরু করে। ১৮৯৮ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এই যুদ্ধে প্রবেশ করে কিউবার পক্ষ নিয়ে স্পেনীয়দের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। তারা কিউবাকে মার্কিন প্রতিরক্ষার অধীনে স্বাধীন ঘোষণা করে। ১৯০২ সালে কিউবানরা স্বায়ত্তশাসন শুরু করে, যদিও দেশটিতে মার্কিন প্রভাব তখনও প্রবল ছিল। ১৯০৩ সালের এক চুক্তি অনুযায়ী কিউবার গুয়ান্তানামো উপসাগর এলাকায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এখনও একটি নৌঘাঁটি চালু রেখেছে। বিংশ শতাব্দীর প্রথমভাগের অধিকাংশ সময় জুড়ে কিউবার সরকার ধারাবাহিকভাবে কিছু দুর্নীতিপরায়ণ রাষ্ট্রপতি ও স্বৈরিশাসকের অধীনে শাসিত হয়। ১৯৩৪ সাল থেকে সামরিক অফিসার ফুলগেনসিও বাতিস্তাই প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে কখনো সামরিক স্বৈরশাসক, কখনো বেসামরিক রাষ্ট্রপতি, কখনও পর্দার আড়ালের সামরিক নেতা হিসেবে দেশটি শাসন করা শুরু করেন। ১৯৫০-এর দশকের মধ্যভাগে বহু কিউবান বাতিস্তার স্বৈরশাসন, রাজনৈতিক নিপীড়ন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে প্রতিবাদমুখর হয়ে ওঠে। বাতিস্তার বিরুদ্ধ প্রতিবাদ পরবর্তীতে কিউবান বিপ্লবে রূপ নেয়। ১৯৫৯ সালে ফিদেল কাস্ত্রোর নেতৃত্বে কিউবার কমিউনিস্ট পার্টি বাতিস্তা সরকারকে ক্ষমতাচ্যুত করে এবং কিউবায় একদলীয় কমিউনিস্ট শাসন প্রবর্তন করেন। তখন থেকেই কমিউনিস্ট পার্টির নেতা কাস্ত্রো দেশটির রাষ্ট্রপ্রধান এবং সব রকম নীতিবিষয়ক সিদ্ধান্তের চূড়ান্ত সিদ্ধান্তগ্রহণকারী ব্যক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করেন। ১৯৬০-এর দশকে কাস্ত্রো মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে বিশ্বের প্রধান সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র সোভিয়েত ইউনিয়নের সাথে সম্পর্ক গড়ে তোলেন। ১৯৬১ সালে কাস্ত্রোর নেতৃত্বাধীন কিউবা সরকারি ভাবে মার্কসবাদ গ্রহণ করে। কাস্ত্রো সে সময় সোভিয়েত ইউনিয়ন এ মার্ক্সবাদের যে রূপটি প্রচলিত ছিল, সেই মডেলটি গ্রহণ করেন। এর মাধ্যমে কিউবার কমিউনিস্ট পার্টি সুসংগঠিত ভাবে রাষ্ট্রকে নিয়ন্ত্রণ করতে সক্ষম হয়েছিল। তখন থেকে কিউবা সমাজতান্ত্রিক অর্থনীতি ও রাজনৈতিক নীতি মেনে শাসিত হয়ে আসছে। কিউবা সম্পূর্ণভাবে কমিউনিস্ট পার্টির নিয়ন্ত্রণাধীন এবং দেশটির অর্থনীতিও রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত। সমাজতন্ত্রে কিউবার জনগণের সামগ্রিক উন্নয়নের স্বার্থে ব্যক্তিস্বাধীনতার বিষয়টি বিসর্জন দেওয়া হয়। কমিউনিস্ট আদর্শ অনুসারে ধর্মপালন নিরুৎসাহিত করা হয়, তবে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়নি। কিন্তু কিউবার ইতিহাস ও সংস্কৃতি পূর্ব ইউরোপীয় দেশগুলির মত না হওয়ায় কিউবার সমাজতন্ত্র সোভিয়েত মডেল পুরোপুরি অনুসরণ করতে পারেনি। যদিও কিউবার প্রশাসনিক দফতর ও সংস্থাগুলির কাঠামো সোভিয়েত ধাঁচের ছিল, তা সত্ত্বেও কাস্ত্রোই মূল প্রশাসনের মূল পরিচালক। ইতিহাস কিউবার প্রথম লিপিবদ্ধ ইতিহাস জানা যায় ১৪৯২ সালের অক্টোবর ২৮ তারিখ থেকে। এই দিন দিগ্বিজয়ী নাবিক ক্রিস্টোফার কলম্বাস তার প্রথম অভিযানে কিউবায় পৌঁছে এই অঞ্চলটিকে স্পেনের অধীন বলে দাবি করেন। কলম্বাস যুবরাজ জুয়ানার নামানুসারে এই দ্বীপটির নাম রেখেছিলেন আইলা জুয়ানা। তখন এই দ্বীপে আমেরিকার আদিবাসীরা বসবাস করতো যাদের নাম ছিল টাইনো এবং সিবোনেই। এরা মূলত উত্তর, দক্ষিণ এবং মধ্য আমেরিকার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে কয়েক শতাব্দী পূর্বে জটিল প্রক্রিয়ায় এই দ্বীপে অভিবাসী হয়ে এসেছিল। টাইনোরা মূলত কৃষিকাজ করতো এবং আর সিবোনেইরা কৃষিকাজ এবং পশু শিকার উভয় কাজ করেই জীবিকা নির্বাহ করতো। প্রাথমিক টাইনো সংস্কৃতিতে উল্লেখযোগ্য তামা ব্যবসা ছিল। সরকার এবং রাজনীতি কিউবা একটি একদলীয় কমিউনিস্ট রাষ্ট্র। এর শাসনযন্ত্র সম্পূর্ণভাবেই কিউবার কমিউনিস্ট পার্টির অধীন। ১৯৭৬ সালে প্রণীত সংবিধান বাতিল করে কিউবায় ১৯৯২ সালে নতুন সংবিধান গৃহীত হয়, যা মার্ক্স, এঙ্গেল্‌স এবং লেনিনের চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত। এই নবপ্রণীত সংবিধান অনুসারে কিউবার কমিউনিস্ট পার্টি "রাষ্ট্র এবং সমাজের নেতৃত্বপ্রদানকারী মূল চালিকাশক্তি" হিসেবে অভিহিত হয়েছে। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল কিউবা প্রজাতন্ত্র অনেকগুলি দ্বীপের সমষ্টি। এদের মধ্যে প্রধান দ্বীপটি কিউবা দ্বীপ। ইসলা দে লা হুবেন্তুদ ২য় বৃহত্তম দ্বীপ। এছাড়াও আরও অনেক ছোট ছোট দ্বীপ কিউবার অন্তর্ভুক্ত। অর্থনীতি যদিও কিউবা একটি একদলীয় কমিউনিস্ট রাষ্ট্র। এটি মার্ক্স, এঙ্গেল্‌স এবং লেনিনের চিন্তাধারায় অনুপ্রাণিত ও অর্থনীতিও রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত তবুও এটি বর্তমানে বাজার অর্থনীতি এর ধারণা এর দিকে যাচ্ছে। এখন বেশিরভাগ মানুষ কৃষিকাজ এবং পশু পালন এর কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। কৃষিকাজ কিউবাবাসীদের প্রধান উপজীবিকা। আবাদি জমির দুই তৃতীয়াংশে আখ চাষ। তামাক, কফি, ক্যাকাও, ফল, শাকসবজি, ভুট্টা, আলু, চাল প্রভৃতি প্রধান কৃষিপণ্য। কিউবা বনজ সম্পদে সমৃদ্ধ। মেহগনি, সিডার, বিকলগ্রাম, মাজাগুয়া, টেকা প্রভৃতি কাঠের জন্য বিখ্যাত। খনিজ সম্পদে কিউবা সমৃদ্ধ। প্রধান প্রধান খনিজ সম্পদ হল - তামা, ম্যাঙ্গানিজ, ক্রোমিয়াম, নিকেল, গন্ধক, ক্রোমাইট, কোবান্ট সিলিকা, রুপা, কয়লা ও তেল প্রভৃতি। কিউবা শিল্পে মোটামুটি সমৃদ্ধ। প্রধান প্রধান শিল্প হচ্ছে চিনি, সাবান, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, ভোগ্যপণ্য, ইস্পাত শিল্প প্রভৃতি। জনসংখ্যা ২০১৪ সালের আদমশুমারী অনুযায়ী দেশটিতে জনসংখ্যা ১১,২৩৮,৩১৭ জন। অর্থাৎ প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১০২ জন জনসংখ্যা রয়েছে। সংস্কৃতি আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ ক্যারিবীয় দ্বীপ কিউবা একদলীয় রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র স্পেনীয় ভাষী রাষ্ট্র ও অঞ্চল উত্তর আমেরিকার রাষ্ট্র সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র ক্যারিবীয় রাষ্ট্র প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ বৃহত্তর আন্তিলীয় দ্বীপপুঞ্জ দ্বীপ রাষ্ট্র প্রজাতন্ত্র ছোট দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র সার্বভৌম রাষ্ট্র ১৯০২-এ উত্তর আমেরিকায় প্রতিষ্ঠিত
https://en.wikipedia.org/wiki/Cuba
Cuba
Cuba, officially the Republic of Cuba, is an island country, comprising the island of Cuba (largest island), Isla de la Juventud, and 4,195 islands, islets and cays surrounding the main island. It is located where the northern Caribbean Sea, Gulf of Mexico, and Atlantic Ocean meet. Cuba is located east of the Yucatán Peninsula (Mexico), south of both Florida and the Bahamas, west of Hispaniola (Haiti/Dominican Republic), and north of Jamaica and the Cayman Islands. Havana is the largest city and capital. Cuba is the third-most populous country in the Caribbean after Haiti and the Dominican Republic, with about 10 million inhabitants. It is the largest country in the Caribbean by area. The territory that is now Cuba was inhabited as early as the 4th millennium BC, with the Guanahatabey and Taíno peoples inhabiting the area at the time of Spanish colonization in the 15th century. It was then a colony of Spain, through the abolition of slavery in 1886, until the Spanish–American War of 1898, when Cuba was occupied by the United States and gained independence in 1902. In 1940, Cuba implemented a new constitution, but mounting political unrest culminated in the 1952 Cuban coup d'état and the subsequent dictatorship of Fulgencio Batista. The Batista government was overthrown in January 1959 by the 26th of July Movement during the Cuban Revolution. That revolution established communist rule under the leadership of Fidel Castro. The country was a point of contention during the Cold War between the Soviet Union and the United States, and nuclear war nearly broke out during the Cuban Missile Crisis of 1962. Following the dissolution of the Soviet Union, Cuba faced a severe economic downturn in the 1990s, known as the Special Period. In 2008, Fidel Castro retired after 49 years; Raúl Castro was elected his successor. Raúl Castro retired as president in 2018 and Miguel Díaz-Canel was elected president by the National Assembly following parliamentary elections. Raúl Castro retired as First Secretary of the Communist Party in 2021 and Díaz-Canel was elected. Cuba is a socialist state, in which the role of the Communist Party is enshrined in the Constitution. Cuba has an authoritarian government where political opposition is not permitted. Censorship is extensive and independent journalism is repressed; Reporters Without Borders has characterized Cuba as one of the worst countries for press freedom. Culturally, Cuba is considered part of Latin America. It is a multiethnic country whose people, culture and customs derive from diverse origins, including the Taíno Ciboney peoples, the long period of Spanish colonialism, the introduction of enslaved Africans and a close relationship with the Soviet Union during the Cold War. Cuba is a founding member of the United Nations, G77, Non-Aligned Movement, Organisation of African, Caribbean and Pacific States, ALBA, and Organization of American States. It has one of the world's few planned economies, and its economy is dominated by tourism and the exports of skilled labor, sugar, tobacco, and coffee. Cuba has historically—before and during communist rule—performed better than other countries in the region on several socioeconomic indicators, such as literacy, infant mortality and life expectancy. Cuba has a universal health care system which provides free medical treatment to all Cuban citizens, although challenges include low salaries for doctors, poor facilities, poor provision of equipment, and the frequent absence of essential drugs. A 2023 study by the Cuban Observatory of Human Rights (OCDH), estimated 88% of the population is living in extreme poverty. The traditional diet is of international concern due to micronutrient deficiencies and lack of diversity. As highlighted by the World Food Programme (WFP) of the United Nations, rationed food meets only a fraction of daily nutritional needs for many Cubans, leading to health issues.
1320
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%9C%20%E0%A6%93%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B6%E0%A6%BF%E0%A6%82%E0%A6%9F%E0%A6%A8
জর্জ ওয়াশিংটন
জর্জ ওয়াশিংটন (ফেব্রুয়ারি ২২, ১৭৩২ – ডিসেম্বর ১৪, ১৭৯৯) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম রাষ্ট্রপতি। তিনি আমেরিকার স্বাধীনতা যুদ্ধ-এ কন্টিনেন্টাল আর্মির সর্বাধিনায়কের দায়িত্ব পালন করেন। তাকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র গঠনের প্রধান বলে উল্লেখ করা হয় এবং তিনি তার জীবদ্দশায় এবং এখনও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতির জনক হিসেবে পরিচিত। ওয়াশিংটন উপনিবেশিক ভার্জিনিয়ার এক ধনাট্য পরিবারে জন্মগ্রহণ করেন। তার পরিবার তামাক চাষ এবং দাস ব্যবসায়ের সাথে জড়িত ছিল। তিনি পরবর্তীতে উত্তরাধিকার সূত্রে তা লাভ করেন। তার যৌবনে তিনি উপনিবেশিক মিলিশিয়ার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ লাভ করেন এবং ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধের প্রথম ভাগ পর্যন্ত এই পদে ছিলেন। ১৭৭৫ সালে দ্বিতীয় কন্টিনেন্টাল কংগ্রেস মার্কিন বিপ্লবের সময় তাকে কন্টিনেন্টাল আর্মির সর্বাধিনায়ক পদে পদোন্নতি প্রদান করেন। ওয়াশিংটন ১৭৭৬ সালে ব্রিটিশদের বোস্টন থেকে বিতাড়িত হতে বাধ্য করে, কিন্তু পরের বছর তিনি ব্রিটিশদের কাছে পরাজিত হন এবং নিউ ইয়র্ক সিটিতে প্রায় ধরা পড়ে যান। শীতকালের মাঝামাঝিতে ডিলাওয়্যার নদী পাড় হয়ে তিনি ট্রেন্টন এবং প্রিন্সটনের যুদ্ধে ব্রিটিশদের পরাজিত করেন এবং নিউ জার্সি পুনঃদখল করেন। তার কৌশলে কন্টিনেন্টাল সৈন্যদল ১৭৭৭ সালে সারাটোগায় এবং ১৭৮১ সালে ইয়র্কটাউনে দুটি প্রধান ব্রিটিশ সৈন্যদলকে বন্দী করতে সমর্থ হয়। ইতিহাসবেত্তাগণ ওয়াশিংটনকে তার জেনারেল নির্বাচন এবং তত্ত্বাবধান; সেনাদের নির্দেশ প্রদান; কংগ্রেস, রাজ্য সরকার ও তাদের মিলিশিয়ার সাথে সমন্বয়; এবং যুদ্ধের রসদ, সরঞ্জামাদি ও প্রশিক্ষণের জন্য তার উচ্চ-প্রশংসা করেন। যুদ্ধে ওয়াশিংটন ১৭৮৩ সালে বিজয় নিশ্চিত হওয়ার পর, ওয়াশিংটন ক্ষমতা দখল না করে সর্বাধিনায়ক পদ থেকে অব্যহতি নেন, যা মার্কিন গনপ্রজাতন্ত্র প্রণয়নে তার অঙ্গীকারের প্রমাণ। ১৭৮৭ সালে তিনি ফিলাডেলফিয়ায় অনুষ্ঠিত সাংবিধানিক সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন। এই সম্মেলনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে নতুন সরকার ব্যবস্থা প্রণয়ন করা হয়। ওয়াশিংটন তার নেতৃত্বের গুণাবলির জন্য প্রশংসিত ছিলেন এবং ইলেকটোরাল কলেজের প্রথম দুটি নির্বাচনে সর্বসম্মতভাবে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৭৮৯ সালে নির্বাচন পরবর্তী সময়ে তিনি বিদ্রোহী অংশসমূহ একত্রিত করার কাজ করেন। তিনি সকল ফেডারেল এবং রাজ্যের সকল ঋণ পরিশোধের জন্য আলেকজান্ডার হ্যামিলটনের অনুষ্ঠানের সমর্থন দেন, সরকারের একটি স্থায়ী আসন প্রতিষ্ঠা করেন, একটি কার্যকর করব্যবস্থা চালু করেন এবং কেন্দ্রীয় ব্যাংক প্রতিষ্ঠা করেন। দুই মেয়াদে রাষ্ট্রপতি থাকার পর তিনি অবসরে যান। দুই মেয়াদে এই অবসরের রীতি ১৯৪০ সালের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট তৃতীয় মেয়াদে নির্বাচিত হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত চলে। তার মৃত্যুর পর ভার্জিনিয়ার তৃতীয় হেনরি লি ওয়াশিংটনের প্রশংসা করে বলেন, "যুদ্ধে প্রথম, শান্তিতে প্রথম এবং তার জনগণের হৃদয়ে প্রথম।" তিনি জীবিত অবস্থায় এবং মৃত্যুর পরও পরম পূজনীয়। সমালোচকদের এবং জনগণের উপর করা জরিপে ফলাফলে তিনি সবসময় যুক্তরাষ্ট্রের ইতিহাসের সেরা তিন রাষ্ট্রপতির একজন হিসেবে স্থান অধিকার করেছেন। প্রারম্ভিক জীবন জন্ম ও শিক্ষা (১৭৩২–১৭৫৩) জর্জ ওয়াশিংটন পোপ্‌স ক্রিক এস্টেট ওয়েস্টমোরল্যান্ড, ভার্জিনিয়া, ব্রিটিশ আমেরিকায় (বর্তমান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র) জন্মগ্রহণ করেন। তিনি অগাস্টিন ওয়াশিংটন (১৬৯৪-১৭৪৩) ও তার দ্বিতীয় স্ত্রী ম্যারি বল ওয়াশিংটন-এর প্রথম সন্তান। জুলীয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে তার জন্ম তারিখ ১১ ফেব্রুয়ারি, ১৭৩১ খ্রিষ্টাব্দ এবং গ্রেগরীয় বর্ষপঞ্জী অনুসারে ২২ ফেব্রুয়ারি, ১৭৩২ খ্রিষ্টাব্দ। ওয়াশিংটন মূলত ইংরেজ ভদ্র সম্প্রদায় বংশোদ্ভূত। তার পূর্বপুরুষগণ ইংল্যান্ডের সালগ্রেভ থেকে আমেরিকায় যান। তার প্র-পিতামহ জন ওয়াশিংটন ১৬৫৬ সালে ভার্জিনিয়া গমন করেন এবং জমি ও ক্রীতদাসদের একত্রিত করেন। একই কাজ করেন তার পুত্র লরেন্স ওয়াশিংটন এবং তার নাতী, জর্জের পিতা অগাস্টিন ওয়াশিংটন। অগাস্টিন ছিলেন একজন তামাক চাষী এবং তিনি তার জমিতে লোহা উৎপাদনে বিনিয়োগ করেন। জর্জের বাল্যকালে অগাস্টিন ভার্জিনিয়ার ভদ্র সম্প্রদায়ের মধ্যবিত্ত সদস্য ছিলেন। জর্জ ওয়াশিংটনের ছয়জন ভাইবোন প্রাপ্ত বয়স্ক হয়েছিল, যাদের মধ্যে লরেন্স ও অগাস্টিন জুনিয়র - এই দুইজন ছিল তার পিতার প্রথম পক্ষের স্ত্রী জেন বাটলার ওয়াশিংটনের গর্ভের। তার বাকি চার ভাইবোনরা হল স্যামুয়েল, বেটি এলিজাবেথ, জন অগাস্টিন, ও চার্লস। তার তিনজন ভাইবোন প্রাপ্ত বয়স্ক হওয়ার পূর্বে মারা গিয়েছিল। তাদের মধ্যে তার বোন মিলড্রেড এক বছর বয়সে মারা যায়, তার সৎভাই বাটলার শিশুকালে মারা যায় এবং সৎবোন জেন বার বছর বয়সে মারা যায়, তখন জর্জের বয়স ছিল দুই। তার পিতা ১৭৪৩ সালে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে মারা যান। তখন তার বয়স এগার। ভূমি জরিপকার্য ওয়াশিংটনের জরিপকার্যে অংশগ্রহণ শুরু হয় তার জীবনের প্রারম্ভিক পর্যায়ে স্কুলে চর্চার মাধ্যমে। এই চর্চার মাধ্যমে তিনি ভূমি জরিপ পেশার মূল বিষয়ের শিক্ষা গ্রহণ করেন এবং পরে বাস্তব অভিজ্ঞতা অর্জন করেন। তার প্রথম জরিপ কাজের অভিজ্ঞতা হয় মাউন্ট ভার্ননের পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে। জরিপকার্যের তার প্রথম সুযোগ আসে ১৭৪৮ সালে যখন তার প্রতিবেশী এবং বন্ধু জর্জ ফেয়ারফ্যাক্সের নেতৃত্বে একটি জরিপ দলের সাথে যোগদান করার জন্য আমন্ত্রণ পান। ফেয়ারফ্যাক্স পশ্চিম ভার্জিনিয়া সীমান্ত বরাবর ভূখণ্ডের বিশাল ভূভাগের জরিপের জন্য একটি পেশাদারী জরিপ সংস্থা গঠন করে। সেখানে তরুণ ওয়াশিংটন অমূল্য অভিজ্ঞতা লাভ করে। ওয়াশিংটন ১৭৪৯ সালে ১৭ বছর বয়সে একজন পেশাদারী আমিন হিসেবে কর্মজীবন শুরু করে। তিনি পরবর্তীতে উইলিয়াম অ্যান্ড মেরি কলেজ থেকে কমিশন লাভ করেন এবং আমিনের লাইসেন্স পান এবং নব্য প্রতিষ্ঠিত কুলপিপার কাউন্টির সরকারি আমিন হন। তার ভাই লরেন্সের বিশিষ্ট ফেয়ারফ্যাক্স পরিবারের সাথে তার যোগাযোগের কারণে তিনি ভালো বেতনের এই সরকারি পদে চাকরি পান। তিনি তার প্রথম জরিপ কাজ সম্পন্ন করেন দুই সপ্তাহেরও কম সময়ের মধ্যে। এই সময়ে তিনি ৪০০ একর জমির ভূগর্ভস্থ অংশের নকশা তৈরি করেন এবং একটি প্রতিশ্রুতিশীল কর্মজীবনের পথে এগিয়ে যাচ্ছিলেন। তিনি পশ্চিম ভার্জিনিয়াতে তার অনেক জমি অধিগ্রহণ করেন এবং এই কাজের প্রাথমিক পর্যায়ে অধিগ্রহণকৃত শেনানডোহ উপত্যকায় জমি ক্রয় করেন। পরের চার বছর ধরে ওয়াশিংটন পশ্চিম ভার্জিনিয়ায় এবং ভার্জিনিয়া বিনিয়োগকারীদের দ্বারা পরিচালিত ভূমি বিনিয়োগ সংস্থা ওহাইও কোম্পানির জন্য ভূমি জরিপের কাজ করেন। তিনি ভার্জিনিয়া মিলিশিয়া কমান্ডার হিসেবে লরেন্সের অবস্থানের কারণে ভার্জিনিয়ার নতুন লেফটেন্যান্ট গভর্নর ররবার্ট ডিনউইডির নজরে আসেন। তিনি নজরে না আসার কোন কারণ ছিল না। তিনি ছিলেন ছয় ফুটের অধিক লম্বা, এবং তার সমসাময়িক অধিকাংশের তুলনায় লম্বা ছিলেন। ১৭৫০ সালের অক্টোবর মাসে ওয়াশিংটন সরকারি আমিন পদ থেকে পদত্যাগ করেন, যদিও তিনি তার নতুন পেশায় পরবর্তী তিন বছর ধরে কঠোর পরিশ্রমী হিসেবে কাজ করতে থাকেন। তিনি দক্ষিণ ভার্জিনিয়া জন্য সেনা বিভাগের সহকারী কর্মকর্তা হিসাবে সামরিক লাভের পূর্ব পর্যন্ত আরো দুই বছর পেশাগতভাবে তার জরিপকার্য অব্যাহত রাখেন এবং তাকে বেশিরভাগই ফ্রেডেরিক কাউন্টিতে কাজ করতে দেখা যায়। ১৭২৫ সাল নাগাদ ওয়াশিংটন প্রায় ২০০টি জরিপ কাজ সম্পন্ন করেন এবং ৬০ হাজার একরের বেশি ভূমির জরিপ করেন। তিনি ১৭৯৯ সাল পর্যন্ত তার জীবনের বিভিন্ন সময়ে জরিপের কাজ চালিয়ে যান। ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধ ওয়াশিংটন ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধে ভার্জিনিয়ার ব্রিটিশ উপনিবেশের মিলিশিয়ার মেজর হিসেবে সেনাবাহিনীতে তার কর্মজীবন শুরু করেন। ১৭৫৩ সালে তাকে ব্রিটিশ রাজের দূত হিসেবে দুর-উত্তরে বর্তমান পেনসিলভানিয়ার এরিতে ফরাসি ও ভারতীয় অফিসালদের নিকট পাঠানো হয়। ওহাইও কোম্পানি ছিল ওহাইও উপত্যকায় ব্যবসায় সম্প্রসারণের জন্য ব্রিটিশ বিনিয়োগকারীদের অন্যতম মাধ্যম, যার মাধ্যমে ভারতীয় বাণিজ্যে নতুন দিগন্তের সূচনা হয়। ১৭৫৩ সালে ফরাসিরা ওহাইও কাউন্টিতে তাদের সেনা মোতায়ন নিয়ন্ত্রণে নিয়ে যায়। ভার্জিনিয়া ও পেনসিলভানিয়ার ব্রিটিশ উপনিবেশ ওহাইওকে তাদের নিজেদের অঞ্চল হিসেবে দাবী করে। এ থেকে দুই অঞ্চলের মধ্যে যুদ্ধ শুরু হয়, যা পরে ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধ (১৭৫৪-১৭৬২) নামে পরিচিতি লাভ করে এবং এ থেকেই বিশ্বব্যাপী সাত বছরের যুদ্ধ (১৭৫৬-৬৩) শুরু হয়। ওয়াশিংটন শুরু থেকেই এই যুদ্ধে জড়িত হয়ে পড়েন। যুদ্ধের শুরু উপনিবেশিক ভার্জিনিয়ার ডেপুটি গভর্নর রবার্ট ডিনউইডিকে ব্রিটিশ সরকার নির্দেশ দেয় ওহাইও নদী অববাহিকাসহ ব্রিটিশ অঞ্চলসমূহ দাবী করছে এমন প্রতিপক্ষকে পাহারা দিতে। ১৭৫৩ সালের শেষের দিকে ডিনউইডি ওয়াশিংটনকে ফরাসিদের ওহাইও উপত্যকা ছাড়ার চিঠি পাঠাতে নির্দেশ দেন। এর এক বছর পূর্বে মিলিশিয়ার নতুন জেনারেল হিসেবে দ্বায়িত্ব পাওয়ার পর ওয়াশিংটন নিজেকে প্রমাণ করার সুযোগের অপেক্ষায় ছিলেন। এই সফরে ওয়াশিংটন মিলিশিয়ার সাথে ফরাসিদের আসন্ন সংঘর্ষে তাদেরকে সমর্থন দেওয়ার জন্য লগ্‌সটাউনে তানাচারিসন ("হাফ-কিং" নামেও পরিচিত ছিল) এবং ইংল্যান্ডের সাথে সন্ধিকৃত অন্যান্য ইরোকোইস প্রধানদের সাথে সাক্ষাৎ করেন। তিনি চিঠিটি স্থানীয় ফরাসি কমান্ডার জাক লেগার্দিয়ো দে সেন্ট-পিঁয়েরের কাছে পাঠান। জাক ভদ্রভাবে তা প্রত্যাখ্যান করেন। ওয়াশিংটন এই সময়ে একটি দিনলিপি রাখতেন যা ডিনিউডির আদেশে উইলিয়াম হান্টার প্রকাশ করেন এবং এই দিনলিপি তাকে ভার্জিনিয়ার বিখ্যাত করে তুলে। তার এই জনপ্রিয়তা তাকে কমিশন পেতে এবং তার সামরিক জীবন শুরু করতে সাহায্য করে। ডিনউইডি ওয়াশিংটনকে ওহাইও কাউন্টিতে প্রেরণ করে বর্তমান পেনসিলভানিয়ার পিটসবার্গে অবস্থিত ওহাইও কোম্পানির নির্মাণাধীন দুর্গ পাহারা দেওয়ার জন্য। তার সেখানে পৌঁছানোর পূর্বে একটি ফরাসি সেনাদল সেখানকার উপনিবেশিক বাণিজ্যকর্মীদের বিতাড়িত করে ডুকোয়েন্স দুর্গ নির্মাণ শুরু করে। ফরাসি সৈন্যদের একটি বিচ্ছিন্ন অংশ পরিচালনা করেন জোসেপ কোলোঁ দে জুমনভিয়া। তাদের খোঁজ করেন তানাচারিসন এবং বর্তমান পেনসিলভানিয়ার ইউনিয়নটাউনের কয়েকজন সৈন্য। ১৭৫৪ সালের ২৮ মে ওয়াশিংটন এবং তার কয়েকটি মিলিশিয়া ইউনিট এবং তাদের মিঙ্গো সহযোগীদের সহায়তায় ফরাসিদের অতর্কিত আক্রমণ করে, যা জুমনভিয়া গ্লেনের যুদ্ধ নামে পরিচিতি লাভ করে। যুদ্ধে বা যুদ্ধের পরে আসলে কি হয়েছিল এই বিষয় নিয়ে মতানৈক্য রয়েছে। কিন্তু কিছু প্রাথমিক সূত্র এই বিষয়ে একমত হয়েছে যে এই যুদ্ধ ১৫ মিনিট স্থায়ী হয়েছিল। জুমনভিয়াকে হত্যা করা হয়েছিল এবং তার দলের লোকজনকে হয় মেরে ফেলা হয়েছিল বা বন্দী হিসেবে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। তবে জুমনভিয়া তানাচারিসনের হাতে খুন হয়েছিল, বা ওয়াশিংটনের সাথে যখন বসেছিল তখন কেউ বন্দুক দিয়ে গুলি করে হত্যা করে, নাকি অন্য কোন উপায়ে হত্যা করা হয়েছিল এই বিষয় স্পষ্ট নয়। এই যুদ্ধের পর তানাচারিসন ওয়াশিংটনকে 'শহর ধ্বংসকারী' আখ্যা প্রদান করেন। ফরাসিরা এই আক্রমণের প্রতিবাদে ১৭৫৪ সালের জুলাইয়ে ফোর্ট নেসেসিটিতে আক্রমণ করে এবং ওয়াশিংটনকে বন্দী করে নিয়ে যায়। তারা পরে তাকে ভার্জিনিয়ায় তার দলের কাছে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেয়। ইতিহাসবিদ জোসেফ এলিসের ভাষ্য হল এই সময় ওয়াশিংটনের সাহসিকতা, নতুন পরিকল্পনা, অনভিজ্ঞতা, এবং প্রচন্ডতা লক্ষ্য করা যায়। ভার্জিনিয়ায় ফিরে ওয়াশিংটন ক্যাপ্টেন হিসেবে তার পদ অবনতি প্রত্যাখ্যান করেন এবং তার কমিশন থেকে অব্যহতি নেন। ওয়াশিংটনের ওহাইও কাউন্টিতে আক্রমণের আন্তর্জাতিক প্রভাব দেখা যায়। ফরাসিরা ওয়াশিংটনকে জুমনভিয়াকে গুপ্তহত্যার জন্য অভিযুক্ত করে। তারা জুমনভিয়াকে কূটনৈতিক মিশনের অংশ ছিল বলে দাবী করে। ফ্রান্স এবং ব্রিটেন উভয়ই এই অঞ্চলের সমন্বয় ফিরিয়ে আনতে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত ছিল এবং উভয় দেশ ১৭৫৫ সালে উত্তর আমেরিকায় সৈন্য পাঠায়। আনুষ্ঠানিকভাবে ১৭৫৬ সালে যুদ্ধের ঘোষণা দেওয়া হয়। ব্রাডক অভিযান ১৭৫৫ ১৭৫৫ সালে ওয়াশিংটন দুর্ভাগ্যজনক ব্রাডক অভিযানে ব্রিটিশ জেনারেল এডওয়ার্ড ব্রাডকের ঊর্ধ্বতন মার্কিন সাহায্য প্রদানকারী হন। ইহা ছিল উপনিবেশসমূহে ব্রিতিশদের সবচেয়ে বড় অভিযান এবং এর উদ্দেশ্য ছিল ফরাসিদের ওহাইও কাউন্টি থেকে বিতাড়িত করা ও প্রথম উদ্দেশ্য ছিল ডিউকোয়েন্স দুর্গ দখল করা। ওয়াশিংটন প্রথমে ব্রাডকের কাছ থেকে মেজর হিসেবে নিয়োগ চান, কিন্তু যখন বলা হয় যে লন্ডন থেকে না দেওয়া হলে ক্যাপ্টেনের উপর কোন পদ দেওয়া হবে না তখন তিনি স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে যোগ দেন। অভিযানে যাত্রাপথে ওয়াশিংটন মাথা ব্যথা এবং জ্বরাক্রান্ত হয়ে পড়েন। তা সত্ত্বেও তিনি যুদ্ধযাত্রা অব্যাহত রাখেন এবং যখন সৈন্যদল ধীরগতিতে চলতে থাকে তিনি ব্রাডককে সৈন্যদলকে দুইটি ভাগে বিভক্ত করতে পরামর্শ দেন। প্রাথমিক ও তুলনামূলক হালকা অস্ত্রসজ্জিত সৈন্যরা দ্রুত গতিতে চলতে পারে তাই তাদের সামনে রাখতে এবং তাদের পিছনে ভারী অস্ত্রসজ্জিত সৈন্যদের রাখতে বলেন। ব্রাডক তার পরামর্শ গ্রহণ করেন এবং সামনের ভাগের দায়িত্ব গ্রহণ করেন। মনঙ্গাহেলার যুদ্ধে ফরাসি এবং তাদের মিত্র ভারতীয়রা ব্রাডকের স্বল্প সৈন্যদলে গুপ্ত আক্রমণ চালায় এবং জেনারেল ব্রাডক মারাত্মকভাবে আঘাতপ্রাপ্ত হন। বিপর্যস্ত ও হতাহতের ঘটনার পর ব্রিটিশরা ভয়ার্ত ও ছত্রভঙ্গ হয়ে যুদ্ধ থেকে পিছিয়ে আসে। ওয়াশিংটন যুদ্ধক্ষেত্রে ফিরে যায় এবং ব্রিটিশ ও ভার্জিনীয় বিশৃঙ্খল সৈন্যদলকে শৃঙ্খলাবদ্ধভাবে ফিরিয়ে নিয়ে আসে। এই কাজে তিনি তার অসুস্থতা সত্ত্বেও সাহসিকতা ও শক্তির পরিচয় দেন। তার দুটি ঘোড়া গুলিবিদ্ধ হয় এবং তার মাথার টুপি ও কোটে বেশ কয়েকটি গুলি এসে লাগে। যুদ্ধে ৯৭৬ জনের ব্রিটিশ সৈন্যদলের দুই তৃতীয়াংশ মারা যায় এবং আহত হয়। ফোর্ট নেসেসিটির যুদ্ধে ওয়াশিংটনের নির্দেশনার যারা সমালোচনা করেছিলেন তারা এই যুদ্ধে তার কাজের জন্য তাকে পুনরায় বাহবা দেন। ভার্জিনিয়া রেজিমেন্টের কমান্ডার লে. গভর্নর ডিনউইডি ১৭৫৫ সালে ওয়াশিংটনকে "ভার্জিনিয়া রেজিমেন্টের কর্নেল এবং সমস্ত বাহিনীর সর্বাধিনায়ক" হিসেবে কমিশন প্রদান করেন এবং তাকে ভার্জিনিয়ের সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব প্রদান করেন। ভার্জিনিয়া রেজিমেন্ট উপনিবেশসমূহের মধ্যে প্রথম পূর্ণকালীন মার্কিন সামরিক ইউনিট ছিল, যা পার্ট টাইম মিলিশিয়া এবং ব্রিটিশ নিয়মিত ইউনিটের বিপরীত ছিল। ওয়াশিংটনকে "রক্ষনাত্মক বা আক্রমনাত্মক", যেটা তিনি ভাল মনে করেন সেভাবে কাজ করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়। তিনি আনুষ্ঠানিকভাবে কমিশন গ্রহণ করেন, কিন্তু অফিসার পদে পদোন্নতির লাল কোট (এবং বেতন) তাকে এড়িয়ে যেতে থাকে। ব্রিটিশ সেনাদের ভার্জিনিয়া রেজিমেন্টের অন্তর্ভুক্ত করার জন্য ডিনউইডিও ব্যর্থ হয়েছিলেন। হাজার সৈন্যের নির্দেশ প্রদানে ওয়াশিংটন একজন কড়াশাসক ছিলেন এবং তিনি প্রশিক্ষণের ওপর জোর দিয়েছিলেন। তিনি পশ্চিমে ভারতীয়দের বিরুদ্ধে নিষ্ঠুর অভিযানের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন; তার রেজিমেন্ট ১০ মাসে ২০টি যুদ্ধে জয়লাভ করে এবং তার এক তৃতীয়াংশ মানুষ হারায়। ওয়াশিংটনের জোরালো প্রচেষ্টায় ভার্জিনিয়ার সীমান্ত জনগণ অন্যান্য উপনিবেশ থেকে কম পীড়িত হয়। ইতিহাসবেত্তা এলিস এই প্রসঙ্গে বলেন যে এই যুদ্ধে "এটি ছিল তার একমাত্র অযোগ্য সাফল্য"। ১৭৫৮ সালে ওয়াশিংটনে ডিউকোয়েন্স দুর্গ দখল করার জন্য ফোর্বস অভিযানে অংশগ্রহণ করেন। তিনি একটি বন্ধুত্বপূর্ণ গোলা-বারুদ প্রদর্শনীতে বিব্রত হন। তার দল এবং অন্য ব্রিটিশ সৈন্যদল মনে করে তাদের ফরাসি শত্রুরা এই প্রদর্শনী সংগঠিত করেছে। এতে তারাও পাল্টা গোলা-বারুদ নিক্ষেপ করে এবং এই দুর্ঘটনায় ১৪ জন নিহত এবং ২৬ জন আহত হয়। ওয়াশিংটন এই অভিযানের অন্য কোনও আক্রমণের সাথে জড়িত ছিলেন না। ব্রিটিশরা এতে কৌশলগত জয়লাভ করে এবং ফরাসিরা দুর্গের ত্যাগ করলে তারা ওহাইও উপত্যকার নিয়ন্ত্রণ লাভ করে। অভিযানের পর তিনি ১৭৫৮ সালের ডিসেম্বরে ভার্জিনিয়া রেজিমেন্ট কমিশন থেকে অবসর গ্রহণ করেন। ১৭৭৫ সালে বিপ্লব শুরু না হওয়া পর্যন্ত তিনি সামরিক জীবনে ফিরে আসেননি। যুদ্ধের মধ্যবর্তী সময়: মাউন্ট ভারনন (১৭৫৯-৭৪) ওয়াশিংটন ১৭৫৯ সালের ৬ জানুয়ারি ধনী বিধবা মার্থা ডানড্রিজ কাস্টিসকে বিয়ে করেন। তখন মার্থার বয়স ছিল ২৮। ওয়াশিংটনের প্রাপ্ত চিঠিসমূহ থেকে বলা যায় যে তার বন্ধুের স্ত্রী স্যালি ফেয়ারফ্যাক্সের সাথে তার প্রেমের সম্পর্ক থাকতে পারে। তবুও জর্জ এবং মার্থার বিবাহ সামঞ্জস্যপূর্ণ ছিল, কারণ মার্থা বুদ্ধিমান, করুণাময় এবং প্লান্ট এস্টেট পরিচালনায় অভিজ্ঞ ছিলেন। একসাথে তারা মার্থার আগের পক্ষের সন্তান, জন পারেক কাস্টিস এবং মার্থা পার্ক (প্যাস্টি) কাস্টিসকে প্রতিপালন করেন। পরে তারা মার্থার নাতি-নাতনী এলিনর পার্ক কাস্টিস এবং জর্জ ওয়াশিংটন পার্ক কাস্টিসকে প্রতিপালন করেছিল। জর্জ এবং মার্থা দম্পতির কোন সন্তানই ছিল না; ১৭৫১ সালে গুটিবসন্ত রোগ তাকে বন্ধ্যা করে দেয়। নব-দম্পতি আলেকজান্দ্রিয়ার কাছাকাছি মাউন্ট ভারননে চলে যান, এবং সেখানে তিনি আবাদকারী এবং রাজনৈতিক ব্যক্তিত্বের জীবন গ্রহণ করেন। মার্থার সঙ্গে ওয়াশিংটনের বিবাহের ফলে তার সম্পত্তি এবং সামাজিক অবস্থান উন্নততর হয় এবং তিনি ভার্জিনিয়ার অন্যতম ধনীদের একজন হয়ে ওঠেন। তিনি তার বিয়ের ফলে কাস্টস এস্টেটের এক-তৃতীয়াংশের মালিক হন, যার মূল্য ছিল প্রায় ১০০,০০০ মার্কিন ডলার, এবং মার্থার সন্তানদের প্রতি যত্নবান ছিলেন এবং তাদের পক্ষে বাকি সম্পত্তির দেখাশুনা করেন। ১৭৫৪ সালে রবার্ট ডিনউইডি প্রতিজ্ঞা করেন, যে সকল সেনা এবং কর্মকর্তা ফরাসি ও ভারতীয় যুদ্ধে অংশগ্রহণ করবে তাদের জমি দান করা হবে। ওয়াশিংটন নতুন গভর্নর লর্ড বোটেটোর্টের কাছ থেকে জমি দখল করে নেন এবং ১৭৬৯-৭০ সালে ডিনউইডির প্রতিজ্ঞা পূরণ করেন। পাশাপাশি ওয়াশিংটন বর্তমান ওয়েস্ট ভার্জিনিয়ার পশ্চিমাঞ্চলে জমির মালিকানা লাভ করেন, যে স্থানে কানাওহা নদী প্রবাহিত হয়ে ওহাইও নদীতে পতিত হয়েছে। পরে তিনি তার নিজের নামে আরও জমি ক্রয় করেছিলেন। ১৭৭৫ সাল নাগাদ ওয়াশিংটন মাউন্ট ভারননের সীমানা দ্বিগুণ করে পর্যন্ত নিয়ে যান, এবং এর ক্রীতদাসের পরিমাণ বৃদ্ধি করে ১০০ জনের অধিকে নিয়ে যান। সম্মানিত সামরিক বীর ও বৃহৎ জমিদার হিসেবে তিনি স্থানীয় অফিস স্থাপন করেন এবং ভার্জিনিয়ার প্রাদেশিক আইন পরিষদে নির্বাচিত হন। তিনি ১৭৫৮ সাল থেকে শুরু ক্রএ সাত বছর হাউজ অব বুরগেসের পক্ষে ফ্রেডেরিক কাউন্টির প্রতিনিধিত্ব করেন। ১৭৫৮ সালের নির্বাচনে তিনি ভোটারদের ১৭০ গ্যালন চালের গুঁড়ো, বিয়ার, মদ, হার্ড সিডার এবং ব্র্যান্ডি নিয়ে যান, যদিও ফোর্বস অভিযানে তিনি বেশিরভাগ সময় অনুপস্থিত ছিলেন। বেশ কয়েকজন স্থানীয় অভিজাতদের সহায়তায় ওয়াশিংটন আসনটিতে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পেয়ে বাকি তিনজন প্রার্থীকে পরাজিত করে নির্বাচনে জয়লাভ করেন। আইন পরিষদে তার কর্মজীবনের প্রাথমিক পর্যায়ে ওয়াশিংটন খুব কম কথা বলতেন, কিন্তু ১৭৬০-এর দশকে তিনি ব্রিটেনের কর ও বাণিজ্য নীতির উল্লেখযোগ্য সমালোচক হয়ে ওঠেন। মার্কিন বিপ্লব (১৯৭৫-৮৩) ওয়াশিংটন আমেরিকান বিপ্লবে নেতৃস্থানীয় সামরিক এবং রাজনৈতিক ভূমিকা পালন করে। ১৭৬৭ সালে যখন তিনি ব্রিটিশ পার্লামেন্টের বিভিন্ন কর্মের বিরুদ্ধে প্রথম রাজনৈতিক অবস্থান নেন তখন থেকেই এই বিপ্লবে তার সম্পৃক্ততা শুরু হয়। তিনি উপনিবেশসমূহের জন্য ব্রিটিশ পার্লামেন্ট কর্তৃক প্রণীত প্রথম কর আইন ১৭৬৫ সালের স্ট্যাম্প অ্যাক্টের বিরোধিতা করেন। এই অ্যাক্টে উপনিবেশ থেকে কোন প্রতিনিধি ছিলেন না। তিনি ১৭৬৭ সালে প্রণীত টাউনশিড অ্যাক্টের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়লে তিনি ক্রমবর্ধমান ঔপনিবেশিক প্রতিরোধে অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে শুরু করেন। তিনি ১৭৬৯ সালের মে মাসে এই অ্যাক্ট বাতিল করা না হলে ভার্জিনিয়ায় ইংরেজদের পণ্য বর্জন করার প্রস্তাব পেশ করেন। প্রস্তাবটি নথিবদ্ধ করেন তার বন্ধু জর্জ ম্যাসন। ব্রিটিশ পার্লামেন্ট ১৭৭০ সালে টাউনশেড অ্যাক্ট বাতিল করে। ১৭৭৪ সালে ওয়াশিংটন ইনটলারেবল অ্যাক্টে এই আইনকে "আমাদের অধিকার ও স্বাধিকারের আগ্রাসন" হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বন্ধু ব্রায়ান ফেয়ারফ্যাক্সকে বলেন, "আমার মনে হয় গ্রেট ব্রিটেনের পার্লামেন্টের আমার অনুমতি ছাড়া আমার পকেটে হাত দেওয়ার অধিকার নেই।" তিনি আরও বলেন যে আমেরিকানরা কোন প্রকার অত্যাচারের নিকট মাথা নত করবে না। ১৭৭৪ সালের জুলাই মাসে তিনি একটি বৈঠকের সভাপতিত্ব করেন, যেখানে "ফেয়ারফ্যাক্স রিসলভস" গৃহীত হয়েছিল। এই রিসলভটিতে অন্যান্য বিষয়াবলির সাথে কন্টিনেন্টাল কংগ্রেসের আহ্বান জানানো হয়। আগস্ট মাসে ওয়াশিংটন প্রথম ভার্জিনিয়া কনভেনশনে যোগ দেন, যেখানে তিনি প্রথম কন্টিনেন্টাল কংগ্রেসের প্রতিনিধি হিসেবে নির্বাচিত হন। সর্বাধিনায়ক ১৭৭৫ সালের এপ্রিল মাসে বোস্টনের নিকটবর্তী সংগঠিত লেক্সিংটন ও কনকর্ডের যুদ্ধের পরে উপনিবেশগুলো যুদ্ধে জড়িয়ে পড়ে। ওয়াশিংটন দ্বিতীয় কন্টিনেন্টাল কংগ্রেসে সামরিক উর্দিতে হাজির হন, যা তার যুদ্ধের প্রস্তুতি নির্দেশ করে। তার সম্মান, সামরিক অভিজ্ঞতা, দক্ষতা ছিল এবং তিনি মিলিটারি প্রধান হিসেবে সেনাবাহিনী পরিচালক এবং দেশপ্রেমিক হিসেবে পরিচিত ছিলেন। ভার্জিনিয়া সর্ববৃহৎ উপনিবেশ ছিল এবং স্বীকৃতি লাভের যোগ্য ছিল। নিউ ইংল্যান্ডে প্রথম যুদ্ধ শুরু হয় এবং তার উপলব্ধি করে যে তাদের দক্ষিণের সমর্থন প্রয়োজন। ওয়াশিংটন সর্বাধিনায়কের দপ্তর লাভের আশা করেনি এবং তিনি মনে করতেন তিনি এই পদের যোগ্য নন, কিন্তু তাতে কোন গুরুতর প্রতিযোগিতা ছিল না। কংগ্রেস ১৭৭৫ সালের ১৪ জুন কন্টিনেন্টাল আর্মি গড়ে তুলে। ম্যাসাচুসেটসের জন অ্যাডামস ওয়াশিংটনকে মনোনীত করেন, এবং পরে তাকে কন্টিনেন্টাল আর্মির পূর্ণ জেনারেল এবং সর্বাধিনায়ক হিসেবে নিয়োগ প্রদান করেন। ওয়াশিংটনের বেতন গ্রহণ করতে অস্বীকৃতি জানান, যার ফলে তিনি "মহৎ এবং উদার" কমান্ডিং অফিসার হিসেবে খ্যাতি অর্জন করেন। ব্রিটিশরা তখন ওয়াশিংটন এবং তার সেনাবাহিনীর দ্বারা সংগঠিত হতে যাওয়া আসন্ন বিপদ অনুধাবন করে। ১৭৭৫ সালের ২৩ আগস্ট ব্রিটেন মার্কিন দেশপ্রেমিককে রাজদ্রোহী হিসেবে অভিযুক্ত করে রাজকীয় ফরমান জারি করে। যদি তারা বলপ্রয়োগ করে, তবে তাদের সম্পত্তি জব্দ করা হবে এবং তাদের নেতাদের ফাঁসির মঞ্চে মৃত্যুদণ্ড প্রদান করা হবে। জেনারেল ওয়াশিংটন যুদ্ধে তিনটি ভূমিকা পালন করেন। প্রথমত, তিনি ১৭৭৫-৭৭ সালে এবং পুনরায় ১৯৮১ সালে প্রধান ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর বিপক্ষে সৈন্যদের নেতৃত্ব প্রদান করেন। তিনি অনেকগুলো যুদ্ধে পরাজিত হন, কিন্তু তিনি যুদ্ধে তার সেনাবাহিনী নিয়ে আত্মসমার্পণ করেন নি। তিনি যুদ্ধ শেষ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে অক্লান্তভাবে যুদ্ধ করেন। তিনি কংগ্রেসের সহযোগিতায় যুদ্ধের সামগ্রিক কৌশলের নকশা করেন। দ্বিতীয়ত, তিনি সেনাবাহিনীকে সংগঠিত করতেন এবং প্রশিক্ষণ প্রদান করতেন। তিনি নিয়মিত সৈনিক নিয়োগ করেন এবং অভিজ্ঞ প্রুশীয় সৈনিক ব্যারন ফন স্টেউবেনকে তাদের প্রশিক্ষণ প্রদানের জন্য নিয়োগ দেন। যুদ্ধের প্রচেষ্টা এবং সেনা সরবরাহ কংগ্রেসের আওতায় ছিল, কিন্তু ওয়াশিংটন কংগ্রেসকে অপরিহার্য উপাদানসমূহ প্রদান করার জন্য চাপ প্রদান করতেন। ১৭৭৬ সালের জুন মাসে কংগ্রেসের প্রথম প্রচেষ্টার পাশাপাশি "যুদ্ধ ও অর্ডিন্যান্স বোর্ড" কমিটি প্রতিষ্ঠিত হয়। ১৭৭৭ সালের জুলাই মাসে তা বোর্ড অব ওয়ারের আওতায় চলে যায়, এই কমিটিতে সেনাবাহিনীর সদস্যদেরও অন্তর্ভুক্ত করা হয়। সশস্ত্র বাহিনীর নেতৃত্বের কাঠামো ছিল জগাখিচুড়ি ধরনের ছিল, যার তদারকি করত কংগ্রেসনাল নিয়োগকর্তারা (এবং কংগ্রেস মাঝে মাঝে ওয়াশিংটনের মতামত ব্যতীতই নিয়োগ প্রদান করত)। পাদটীকা তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জি , Pulitzer Prize ১৭৩২-এ জন্ম ১৭৯৯-এ মৃত্যু ১৮শ শতাব্দীর মার্কিন রাজনীতিবিদ আমেরিকান অ্যাকাডেমি অব আর্টস অ্যান্ড সায়েন্সেসের বিশিষ্ট সভ্য ইংরেজ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি ওলন্দাজ বংশোদ্ভূত মার্কিন ব্যক্তি কন্টিনেন্টাল আর্মির জেনারেল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতির জনক মার্কিন সামরিক কর্মকর্তা ১৮শ শতাব্দীর মার্কিন লেখক কংগ্রেশনাল স্বর্ণ পদক প্রাপক মার্কিন ফিলোসফিক্যাল সোসাইটির সদস্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ১৮শ শতাব্দীর রাষ্ট্রপতি
https://en.wikipedia.org/wiki/George_Washington
George Washington
George Washington (February 22, 1732 – December 14, 1799) was an American Founding Father, military officer, farmer, and first president of the United States from 1789 to 1797. Appointed by the Second Continental Congress as commander of the Continental Army in 1775, Washington led Patriot forces to victory in the American Revolutionary War and then served as president of the Constitutional Convention in 1787, which drafted the current Constitution of the United States. Washington has thus become commonly known as the "Father of his Country". Washington's first public office, from 1749 to 1750, was as surveyor of Culpeper County in the Colony of Virginia. In 1752, he received military training and was granted the rank of major in the Virginia Regiment. During the French and Indian War, Washington was promoted to lieutenant colonel in 1754 and subsequently became head of the Virginia Regiment in 1755. He was later elected to the Virginia House of Burgesses and was named a delegate to the Continental Congress in Philadelphia, which appointed him commander-in-chief of the Continental Army. Washington led American forces to a decisive victory over the British in the Revolutionary War, leading the British to sign the Treaty of Paris, which acknowledged the sovereignty and independence of the United States. He resigned his commission in 1783 after the conclusion of the Revolutionary War. Washington played an indispensable role in adopting and ratifying the Constitution, which replaced the Articles of Confederation in 1789. He was then twice elected president unanimously by the Electoral College in 1788 and 1792. As the first U.S. president, Washington implemented a strong, well-financed national government while remaining impartial in a fierce rivalry that emerged between cabinet members Thomas Jefferson and Alexander Hamilton. During the French Revolution, he proclaimed a policy of neutrality while additionally sanctioning the Jay Treaty. He set enduring precedents for the office of president, including republicanism, a peaceful transfer of power, the use of the title "Mr. President", and the two-term tradition. His 1796 farewell address became a preeminent statement on republicanism in which he wrote about the importance of national unity and the dangers that regionalism, partisanship, and foreign influence pose to it. Washington's image is an icon of American culture. He has been memorialized by monuments, a federal holiday, various media depictions, geographical locations including the national capital, the State of Washington, stamps, and currency. In 1976, Washington was posthumously promoted to the rank of general of the Armies, the highest rank in the U.S. Army. Washington consistently ranks in both popular and scholarly polls as one of the greatest presidents in American history.
1322
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%93%E0%A6%9C%E0%A6%A8%20%28%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A5%E0%A6%A4%E0%A6%BE%20%E0%A6%A8%E0%A6%BF%E0%A6%B0%E0%A6%B8%E0%A6%A8%29
ওজন (দ্ব্যর্থতা নিরসন)
ওজন বলতে বোঝানো হতে পারে - ওজন (ভার) - ভরের পরিমাপক; ওজোন - এক প্রকার গ্যাস (Ozone gas, O3)।
https://en.wikipedia.org/wiki/Ozone_(disambiguation)
Ozone (disambiguation)
Ozone is a molecule consisting of three oxygen atoms. Ozone may also refer to:
1324
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9A%E0%A7%80%E0%A6%A8
চীন
চীন ( ঝোংগুও), সাংবিধানিক নাম গণপ্রজাতন্ত্রী চীন বা সংক্ষেপে গণচীন, পূর্ব এশিয়ার একটি রাষ্ট্র। ১৪২ কোটি জনসংখ্যার দেশটি ভারতের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহৎ জনবহুল রাষ্ট্র। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশটি শাসন করে। বেইজিং শহর দেশটির রাজধানী। গণচীনের শাসনের আওতায় পড়েছে ২২টি ও ১টি অধীন প্রদেশ (যার মধ্যে তাইওয়ান প্রদেশ অন্তর্ভুক্ত, গণপ্রজাতন্ত্রী চীন তাইওয়ানকে প্রদেশ হিসেবে দাবী করলেও এটিকে নিয়ন্ত্রণ করে না।), পাঁচটি স্বায়ত্বশাসিত অঞ্চল, চারটি কেন্দ্রশাসিত পৌরসভা (বেইজিং, থিয়েনচিন, সাংহাই এবং ছুংছিং), এবং দুইটি প্রায়-স্বায়ত্বশাসিত বিশেষ প্রশাসনিক অঞ্চল (হংকং এবং মাকাউ)। এছাড়াও চীন তাইওয়ানের ওপরে সার্বভৌমত্ব দাবী করে আসছে। দেশটির প্রধান প্রধান নগর অঞ্চলের মধ্যে সাংহাই, কুয়াংচৌ, বেইজিং, ছোংছিং, শেনচেন, থিয়েনচিন ও হংকং উল্লেখযোগ্য। চীন বিশ্বের একটি বৃহৎ শক্তি এবং এশিয়ার মহাদেশের একটি প্রধান আঞ্চলিক শক্তি। চীনের আয়তন প্রায় ৯৬ লক্ষ বর্গকিলোমিটার। স্থলভূমির আয়তনের দিক থেকে এটি বিশ্বের ৩য়/৪র্থ বৃহত্তম রাষ্ট্র (বিতর্কিত)।। সামগ্রিক আয়তনের বিচারে ও পরিমাপের পদ্ধতিভেদে এটি বিশ্বের তৃতীয় বা চতুর্থ বৃহত্তম এলাকা। চীনের ভূমিরূপ বিশাল ও বৈচিত্র্যময়। দেশটির অনুর্বর উত্তরাংশে অরণ্য স্টেপ তৃণভূমি এবং গোবি ও তাকলা মাকান মরুভূমি যেমন আছে, তেমনি এর আর্দ্র দক্ষিণাংশে আছে উপক্রান্তীয় অরণ্যসমূহ। হিমালয় ও কারাকোরাম পর্বতমালা, পামির মালভূমি ও থিয়েন শান পর্বতমালা চীনকে দক্ষিণ এশিয়া ও মধ্য এশিয়া থেকে ভৌগলিকভাবে আলাদা করেছে। ইয়াংসিকিয়াং নদী (বিশ্বের ৩য় দীর্ঘতম) ও পীত নদী (বিশ্বের ৬ষ্ঠ দীর্ঘতম) তিব্বতের মালভূমি থেকে উত্‌সারিত হয়ে পূর্বের জনবহুল অঞ্চল দিয়ে প্রবাহিত হয়ে সাগরে পড়েছে। প্রশান্ত মহাসাগরে চীনের তটরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় । বোহাই উপসাগর, পীতসাগর, পূর্ব চীন সাগর ও দক্ষিণ চীন সাগর এর সামুদ্রিক সীমানা নির্ধারণ করেছে। চীনের উত্তরে রয়েছে মঙ্গোলিয়া; উত্তর পূর্বে রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়া; পূর্বে চীন সাগর; দক্ষিণে ভিয়েতনাম, লাওস, মায়ানমার, ভারত, ভুটান, নেপাল; দক্ষিণ পশ্চিমে পাকিস্তান; পশ্চিমে আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান, কির্গিজিস্তান ও কাজাকিস্তান। এই ১৪টি দেশ বাদে চীনের পূর্বে পীত সাগরের পাশে রয়েছে দক্ষিণ কোরিয়া ও জাপান; দক্ষিণ চীন সাগরের উল্টো দিকে আছে ফিলিপাইন। চীনারা তাদের দেশকে চুংকুও নামে ডাকে, যার অর্থ "মধ্যদেশ" বা "মধ্যবর্তী রাজ্য"। "চীন" নামটি বিদেশীদের দেওয়া; এটি সম্ভবত খ্রিস্টপূর্ব ৩য় শতকের চিন রাজবংশের নামের বিকৃত রূপ। চীনে বিশ্বের জনসংখ্যার এক-পঞ্চমাংশের বাস। এদের ৯০%-এরও বেশি হল চৈনিক হান জাতির লোক। হান জাতি বাদে চীনে আরও ৫৫টি সংখ্যালঘু জাতির বাস। এদের মধ্যে আছে তিব্বতি, মঙ্গোল, উইঘুর, ছুয়াং, মিয়াও, য়ি এবং আরও অনেক ছোট ছোট জাতি। হান জাতির লোকদের মধ্যেও অঞ্চলভেদে ভাষাগত পার্থক্য দেখা যায়। যদিও শিক্ষাব্যবস্থায় ও গণমাধ্যমে পুতোংহুয়া নামের একটি সাধারণ ভাষা ব্যবহার করা হয়, আঞ্চলিক কথ্য ভাষাগুলি প্রায়শ পরস্পর বোধগম্য নয়। তবে চিত্রলিপিভিত্তিক লিখন পদ্ধতি ব্যবহার করে বলে সব চীনা উপভাষাই একই ভাবে লেখা যায়; এর ফলে গোটা চীন জুড়ে যোগাযোগ সহজ হয়েছে। উত্তর চীন সমভূমি অঞ্চলে পীত নদীর উর্বর অববাহিকাতে বিশ্বের আদিতম সভ্যতাগুলির একটি হিসেবে চীনের উদয় হয়। হাজার হাজার বছর ধরে রাজারা বংশানুক্রমে চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করতেন। এর মধ্যে প্রথম রাজবংশটির নাম ছিল শিআ রাজবংশ( )। ২২১ চিন রাজবংশ অন্যান্য ৬টি বৃহত্তম রাজ্য করায়ত্ত করে প্রথম একীভূত চৈনিক সাম্রাজ্য গঠন করে। এর পরে বহু হাজার বছর ধরে চীনের বহুবার সম্প্রসারণ, বিভাজন, ও সংস্কার সাধন হয়েছে। ১৯১২ সালে সর্বশেষ রাজবংশ চিন রাজবংশের পতন ঘটে ও এর স্থানে চীন প্রজাতন্ত্র স্থাপিত হয়। প্রজাতন্ত্রিটি ১৯৪৯ সাল পর্যন্ত চীনের মূল ভূখণ্ড শাসন করে। সে বছর চীনের গৃহযুদ্ধে সাম্যবাদী জনগণের মুক্তিবাহিনীর বিরুদ্ধে এটি পরাজয় বরণ করেন। চীনের সাম্যবাদী দল ১৯৪৯ সালের ১লা অক্টোবর বেইজিং শহরে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন প্রতিষ্ঠা করে। চীন প্রজাতন্ত্র সরকার তাইওয়ান দ্বীপে স্থানান্তরিত হন এবং সেখানে সাময়িক রাজধানী হিসেবে তাইপেই প্রতিষ্ঠা করেন। চীন প্রজাতন্ত্র সরকার ও গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকার উভয়েই সমগ্র চীনের একমাত্র আইনসম্মত সরকার হিসেবে নিজেদের দাবী করে আসছে, তবে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকার বেশি অঞ্চলের অধিকারী এবং সারা বিশ্বে এর স্বীকৃতিও বেশি। ১৯৭৮ সালের অর্থনৈতিক সংস্কারের অবতারণার পর থেকে চীন বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুত বর্ধমান প্রধান অর্থনীতিগুলির একটিতে পরিণত হয়েছে। ২০১৬ সালের প্রাক্কলন অনুসারে এটি বিশ্বের ২য় বৃহত্তম অর্থনীতি (নামমাত্র মোট দেশজ উৎপাদন অনুযায়ী) এবং সর্ববৃহত্‌ অর্থনীতি (ক্রয়ক্ষমতার সমতা অনুযায়ী)। এছাড়াও চীন বিশ্বের বৃহত্তম রপ্তানিকারক ও দ্বিতীয় বৃহত্তম আমদানিকারক রাষ্ট্র। চীন একটি স্বীকৃত পারমাণবিক অস্ত্রধারী রাষ্ট্র এবং বিশ্বের বৃহত্তম সক্রিয় সেনাবাহিনীর অধিকারী। এর প্রতিরক্ষা বাজেট বিশ্বের ২য় বৃহত্তম। গণপ্রজাতন্ত্রী চীন জাতিসংঘের একটি স্থায়ী সদস্যরাষ্ট্র। ১৯৭১ সালে এটি চীন প্রজাতন্ত্রকে প্রতিস্থাপিত করে জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদ লাভ করে। এছাড়াও চীন বহু আনুষ্ঠানিক ও অনানুষ্ঠানিক বহুপাক্ষিক সংগঠনের সদস্য, যার মধ্যে অন্যতম হল বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থা, এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অর্থনৈতিক সহযোগিতা, ব্রিক্‌স, সাংহাই সহযোগিতা সংস্থা, বাংলাদেশ-চীন-ভারত-মায়ানমার ফোরাম এবং জি-২০। চীনের দুইটি বৃহত্তম নদী হোয়াংহো ও ইয়াংসি। মর্ম ইতিহাস প্রাচীনকালে চীন ছিল পূর্ব এশিয়ার আধিপত্য বিস্তারকারী সভ্যতা। এ অঞ্চলের অন্যান্য সভ্যতাগুলি, যেমন- জাপানি, কোরীয়, তিব্বতি, ভিয়েতনামীয়, এদের সবাইকে চীন প্রভাবিত করেছিল। তারা চীনের শিল্পকলা, খাদ্য, বস্তুসংস্কৃতি, দর্শন, সরকার ব্যবস্থা, প্রযুক্তি এবং লিখন পদ্ধতি গ্রহণ ও অনুসরণ করত। বহু শতাব্দী ধরে, বিশেষ করে ৭ম শতাব্দী থেকে ১৪শ শতাব্দী পর্যন্ত চীন ছিল বিশ্বের সবচেয়ে অগ্রসর সভ্যতা। কাগজ, ছাপাখানা, বারুদ, চীনামাটি, রেশম এবং দিকনির্ণয়ী কম্পাস সবই চীনে প্রথম উদ্ভাবিত হয় এবং সেখান থেকে বিশ্বের অন্যত্র ছড়িয়ে পড়ে। যার ব্যবহার পৃথিবীর যেকোন স্থানে দেখতে পাওয়া যায়। ইউরোপীয় শক্তিগুলি পূর্ব এশিয়ায় আগমন করলে চীনের রাজনৈতিক শক্তি বিপদাপন্ন হয়ে পড়ে। চীনের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলের একটি ক্ষুদ্র প্রশাসনিক অঞ্চল মাকাও মধ্য-১৬শ শতকে পর্তুগিজ নিয়ন্ত্রণে এবং কাছেই অবস্থিত হংকং ১৮৪০-এর দশকে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৯শ শতকে অভ্যন্তরীণ বিপ্লব এবং বিদেশী হস্তক্ষেপের ফলে চীনের শেষ রাজবংশ কিং রাজবংশ দুর্বল হয়ে পড়ে। ১৯১১ সালে চীনা জাতীয়তাবাদীরা শেষ পর্যন্ত এই রাজতন্ত্রের পতন ঘটায়। পরবর্তী বেশ কিছু দশক ধরে একাধিক সামরিক নেতার অন্তর্কোন্দল, জাপানি আক্রমণ, এবং সাম্যবাদী ও কুওমিনতাঙের জাতীয়তাবাদী সরকারের মধ্যকার গৃহযুদ্ধ দেশটিকে ছিন্ন বিচ্ছিন্ন করে দেয়। এর আগে ১৯২৮ সালে জাতীয়তাবাদীরা প্রজাতান্ত্রিক চীন প্রতিষ্ঠা করে। ১৯৪৯ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি গৃহযুদ্ধে জয়লাভ করে এবং চীনের মূল ভূখণ্ডে গণপ্রজাতন্ত্রী চীন রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করে। কুওমিনতাঙেরা দ্বীপ প্রদেশ তাইওয়ানে পালিয়ে যায় এবং সেখানে একটি জাতীয়তাবাদী সরকার গঠন করে। জাতীয়তাবাদী সরকারটি তাইওয়ান ও পার্শ্ববর্তী কিছু দ্বীপ নিয়ন্ত্রণ করলেও প্রাথমিকভাবে এটিই বহির্বিশ্বে সমগ্র চীনের প্রকৃত সরকার হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করেছিল। তবে বর্তমানে বেশির ভাগ দেশ মূল ভূখণ্ডের গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সরকারকেই চীনের প্রকৃত সরকার হিসেবে গণ্য করে। ১৯৪৯ সালে ক্ষমতায় আসার পর চীনের কমিউনিস্ট সরকার কৃষি ও শিল্পব্যবস্থাকে রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার অধীনে নিয়ে আসে। ১৯৭০-এর দশকের শেষ থেকে সরকার অবশ্য অর্থনৈতিক সংস্কার সাধন করে যাতে বৈদেশিক বিনিয়োগ বৃদ্ধি পায়। ১৯৮০ ও ১৯৯০-এর দশকের আরও সংস্কারের ফলে চীনা অর্থনীতি ১৯৮০ থেকে ১৯৯৫ সাল পর্যন্ত বছরে ১০% হারে বৃদ্ধি পায়। ফলে ২১শ শতকের শুরুতে এসে চীনা অর্থনীতি বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম অর্থনীতিতে পরিণত হয়। ১৯৯৭ সালে চীন ব্রিটেনের কাছ থেকে হংকং এর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পায়, তবে অঞ্চলটি উল্লেখযোগ্য পরিমাণ স্বায়ত্তশাসন বজায় রেখেছে। ১৯৭০-এর দশকের শেষে এসে পর্তুগাল মাকাওকে চীনের একটি প্রশাসনিক অঞ্চল হিসেবে স্বীকৃতি দেয় এবং ১৯৯৯ সালে অঞ্চলটি চীনের কাছে হস্তান্তর করে; মাকাওকেও বিশেষ স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলের মর্যাদা দেওয়া হয়। সরকার ন্যাশনাল পিপলস কংগ্রেস হল গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ কক্ষ। স্টেট কাউন্সিল প্রিমিয়ার - লি খছিয়াং ভাইস প্রিমিয়ার - হান ঝেং (উন্নয়ন ও সংস্কার, প্রাতিষ্ঠানিক সংস্কার), সান চুনলান (শিক্ষা, স্বাস্থ্য, খেলাধুলা), হু চুনুয়া (কৃষি ও গ্রামীণ বিষয়, দারিদ্র্যবিরোধী, জলের সম্পদ, বৈদেশিক বাণিজ্য), লিউ হি (অর্থ, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি, শিল্প ও পরিবহন) রাজ্য কাউন্সিলর রাজ্য কাউন্সিলর - ওয়েই ফেংহে (জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী), ওয়াং ইয়ং (রাষ্ট্রায়ত্ত সম্পদ তদারকি ও প্রশাসন কমিশন), ওয়াং ইই (বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী), জিয়াও জি (সেক্রেটারি জেনারেল রাজ্য কাউন্সিলের), ঝাও কেজি (জন সুরক্ষা মন্ত্রী) পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জাতীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় রাজ্য কাউন্সিলের অধীনে দ্বিতীয় স্থান অধিকারী মন্ত্রক। মন্ত্রণালয় পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) উপর কর্তৃত্ব ব্যবহার করে না। সেনা কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশনের (সিএমসি) অধীনস্থ। বিদেশি সামরিক বাহিনীর সাথে সামরিক বিনিময় ও সহযোগিতা করার সময় মন্ত্রণালয় কেবল সিএমসি এবং পিএলএর প্রতিনিধিত্বকারী যোগাযোগ সংস্থা হিসাবে কাজ করে। মন্ত্রীর পদটি সর্বদা একজন সক্রিয় সামরিক কর্মকর্তাকে দেওয়া হয়েছে। লিন পিয়াও ছিলেন উল্লেখযোগ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রী , যিনি ১৯৬২ সালের ভারত-চীন যুদ্ধে প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলেন। চি হাওটিয়ান ছিলেন অপর উল্লেখযোগ্য প্রতিরক্ষা মন্ত্রী , যিনি ১৯৯৩ থেকে ২০০৩ সাল পর্যন্ত প্রশাসনিক দায়িত্বে ছিলেন। জাতীয় উন্নয়ন ও সংস্কার কমিশন বাণিজ্য মন্ত্রণালয় রাজনীতি ও আন্তর্জাতিক সম্পর্ক গণপ্রজাতান্ত্রিক চিনের রাজনীতি একটি একদলীয় সমাজতান্ত্রিক প্রজাতান্ত্রিক কাঠামোয় সংঘটিত হয়। গণচীনের বর্তমান সংবিধানটি ১৯৫৪ সালে প্রথম গৃহীত হয় এবং এতে দেশের শাসনব্যবস্থা ব্যাখ্যা করা হয়েছে। চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশটির রাষ্ট্রীয় পর্যায়ের কর্মকাণ্ড পরিচালনা করে। দেশের ৭ কোটিরও বেশি লোক কমিউনিস্ট পার্টির সদস্য। ১৯৮০-র দশকের অর্থনৈতিক সংস্কারের পর থেকে চীনে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রভাব হ্রাস পেয়েছে এবং স্থানীয় সরকারের নেতাদের প্রতিপত্তি বৃদ্ধি পেয়েছে। চীনের মৌলিক রাজনৈতিক ব্যবস্থাটি গণ কংগ্রেসব্যবস্থা নামে পরিচিত। গণকংগ্রেস ব্যবস্থা পাশ্চাত্য দেশগুলোর মত নির্বাহী, আইনপ্রণয়ন ও বিচার- এই তিন ক্ষমতা পৃথকীকরণ ব্যবস্থা নয়। চীনের সংবিধান অনুযায়ী জাতীয় গণ কংগ্রেস চীনের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতার সর্বোচ্চ সংস্থা। গণ কংগ্রেসের স্থানীয় পর্যায়ের সদস্যরা জনগণের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হন। গণকংগ্রেসের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব চীনের গণ-আদালত নামের বিচার ব্যবস্থাকেও নিয়ন্ত্রণ করে। পররাষ্ট্রনীতি চীন-মার্কিন সম্পর্ক সামরিক শক্তি পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী সামরিক বাহিনী হিসাবে বিবেচিত এবং সাম্প্রতিক দশকগুলিতে দ্রুত আধুনিকীকরণ করেছে। এটি গ্রাউন্ড ফোর্স (PLAGF), নৌবাহিনী (PLAN), বিমান বাহিনী (PLAAF), রকেট ফোর্স (PLARF) এবং স্ট্র্যাটেজিক সাপোর্ট ফোর্স (PLASSF) নিয়ে গঠিত। এর প্রায় ২.২ মিলিয়ন সক্রিয় ডিউটি ​​কর্মী বিশ্বের যা বিশ্বের ২য় বৃহত্তম। চীনে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম পারমাণবিক অস্ত্রের মজুদ রয়েছে, এবং বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম নৌবাহিনী রয়েছে। ২০২২-এর জন্য চীনের সরকারী সামরিক বাজেট ছিল মোট $২৩০ বিলিয়ন (১.৪৫ ট্রিলিয়ন ইউয়ান), যা বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম, যদিও SIPRI অনুমান করে যে সেই বছর তার প্রকৃত ব্যয় ছিল $২৯২ বিলিয়ন। SIPRI এর মতে, ২০১২ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত এর সামরিক ব্যয় গড়ে প্রতি বছর ২১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বা জিডিপির ১.৭ শতাংশ, শুধুমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র তাদের সামরিক খাতের পিছনে প্রতি বছর $৭৩৪ বিলিয়ন খরচ করে যা জিডিপির ৩.৬ শতাংশ। পিএলএ পার্টি এবং রাজ্যের কেন্দ্রীয় সামরিক কমিশন (সিএমসি) দ্বারা পরিচালিত হয়; যদিও আনুষ্ঠানিকভাবে দুটি পৃথক সংস্থা, নেতৃত্বের পরিবর্তনের সময় ব্যতীত দুটি CMC-এর অভিন্ন সদস্যপদ রয়েছে এবং কার্যকরভাবে একটি সংস্থা হিসাবে কাজ করে। CMC-এর চেয়ারম্যান হলেন PLA-এর কমান্ডার-ইন-চিফ, অফিসহোল্ডারও সাধারণত CCP-এর সাধারণ সম্পাদক হন, যা তাদেরকে চীনের সর্বশ্রেষ্ঠ নেতা করে তোলে। ভূগোল অবস্থান ও সীমানা চীন এশিয়া মহদেশের পূর্ব অঞ্চলে এবং প্রশান্ত মহাসাগরের পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। চীনের স্থলভাগের আয়তন প্রায় বর্গকিলোমিটার। আয়তনের দিক থেকে চীন এশিয়ার বৃহত্তম দেশ এবং রাশিয়া ও কানাডার পর চীন বিশ্বে তৃতীয় অথবা চতুর্থ বৃহত্তম দেশ। উত্তর-দক্ষিণে চীন মোহো অঞ্চলের উত্তরের হেইলুংচিয়াং নদীর কেন্দ্রস্থল অর্থাৎ ৫৩.৩০ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ থেকে দক্ষিণে নানসা দ্বীপপুঞ্জের চেনমু-আনসা অর্থাৎ ৪ ডিগ্রি উত্তর অক্ষাংশ পর্যন্ত বিস্তৃত। চীনের সর্বদক্ষিণ আর সর্বউত্তর প্রান্তের মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ৫৫০০ কিলোমিটার। পূর্ব-পশ্চিমে চীন পূর্বের হেইলুংচিয়াং নদী আর উসুলিচিয়াং নদীর সঙ্গমস্থল অর্থাৎ ১৩৫.০৫ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা থেকে পশ্চিমে পামির মালভূমি অর্থাৎ ৭৩.৪০ ডিগ্রি পূর্ব দ্রাঘিমা পর্যন্ত বিস্তৃত। দেশটির পূর্ব আর পশ্চিম প্রান্তের মধ্যকার দূরত্ব প্রায় ৫০০০ কিলোমিটার। চীনের স্থলসীমার দৈর্ঘ্য প্রায় ২২,৮০০ কিলোমিটার। চীনের পূর্ব দিকে উত্তর কোরিয়া, উত্তর দিকে মঙ্গোলিয়া, উত্তর -পূর্ব দিকে রাশিয়া, উত্তর-পশ্চিম দিকে কাজাকিস্তান, কিরগিজস্তান, ও তাজিকিস্তান, পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে আফগানিস্তান, পাকিস্তান, ভারত, নেপাল, ও ভুটান, দক্ষিণ দিকে মিয়ানমার, লাওস ও ভিয়েতনাম। পূর্ব ও দক্ষিণ-পূর্ব দিকে দক্ষিণ কোরিয়া, জাপান, ফিলিপাইন, ব্রুনাই, মালয়েশিয়া ও ইন্দোনেশিয়ার সঙ্গে চীনের সমুদ্র সীমানা রয়েছে। চীনের মূল ভূভাগের তটরেখা উত্তর দিকের ইয়ালুচিয়াং নদীর মোহনা থেকে দক্ষিণ দিকের কুয়াংসি স্বায়ত্ত্বশাসিত অঞ্চলের পেইলুন হো নদীর মোহনা পর্যন্ত বিস্তৃত; এর দৈর্ঘ্য প্রায় ১৮ হাজার কিলোমিটার। চীনের উপকূলীয় অঞ্চলের ভূমিরূপ সমতল এবং এখানে বহু বিখ্যাত বন্দর অবস্থিত। এই বন্দরগুলির বেশির ভাগই সারা বছর বরফমুক্ত থাকে। চীনের নিকটে পোহাই সাগর, হুয়াংহাই সাগর, পূর্ব সাগর, নানহাই সাগর এবং তাইওয়ানের পূর্ব অঞ্চলের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সহ পাঁচটি সাগর রয়েছে। এগুলির মধ্যে পোহাই সাগর চীনের অভ্যন্তরীণ সাগর। তাইওয়ানের পূর্বদিকের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল পূর্বদিকে জাপানের রিইউকিয়ু দ্বীপপুঞ্জের দক্ষিণ-পশ্চিমের সাখি সীমা দ্বীপপুঞ্জ থেকে দক্ষিণ দিকের বাস প্রণালী পর্যন্ত বিস্তৃত। চীনের অভ্যন্তরীণ নদী আর সামুদ্রিক জলসীমা নিয়ে গঠিত সামুদ্রিক অঞ্চলের মোট আয়তন ৩ লক্ষ ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটার। চীনের সামুদ্রিক অঞ্চলে ৫০০০-এরও বেশি দ্বীপ রয়েছে। এগুলির মোট আয়তন প্রায় ৮০ হাজার বর্গকিলোমিটার। দ্বীপগুলির তটরেখার দৈর্ঘ্য প্রায় ১৪ হাজার কিলোমিটার। দ্বীপগুলির মধ্যে বৃহত্তম তাইওয়ান দ্বীপের আয়তন ৩৬ হাজার বর্গকিলোমিটার। দ্বিতীয় বৃহত্তম হাইনান দ্বীপের আয়তন ৩৪ হাজার বর্গকিলোমিটার। তাইওয়ান দ্বীপের উত্তর-পূর্ব সমুদ্রে অবস্থিত তিয়াও ইয়ু তাও দ্বীপ ও ছিওয়েই ইয়ু দ্বীপ চীনের সবচেয়ে পূর্বাঞ্চলীয় দ্বীপ। দক্ষিণ চীন সমুদ্রে ছড়িয়ে থাকা দ্বীপ ও প্রবাল-প্রাচীরগুলিকে নানহাই দ্বীপপুঞ্জ নামে ডাকা হয়। এটি চীনের সবচেয়ে দক্ষিণাঞ্চলীয় দ্বীপপুঞ্জ। অবস্থান অনুযায়ী এগুলোকে তুঙসা দ্বীপপুঞ্জ, সিসা দ্বীপপুঞ্জ, চুংসা দ্বীপপুঞ্জ এবং নানসা দ্বীপপুঞ্জ নামে ডাকা হয়। চীনের মূল অঞ্চলটি তিনটি নদীবিধৌত অববাহিকার কৃষিভিত্তিক অঞ্চল নিয়ে গঠিত। এই তিনটি নদী হল উত্তরের হুয়াং হো, মধ্য চীনের ইয়াং ছি (বা "ছাং চিয়াং"), এবং দক্ষিণের মুক্তা নদী (বা "পার্ল নদী", "চু চিয়াং")। দেশটির ভূপ্রকৃতি বিচিত্র। এখানে আছে বিস্তীর্ণ মরুভূমি, সুউচ্চ পর্বত ও মালভূমি, এবং প্রশস্ত সমভূমি। দেশের উত্তর অঞ্চলে অবস্থিত বেইজিং বা পেইচিং চীনের রাজধানী এবং দেশের সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও যোগাযোগ কেন্দ্র। ইয়াংছে নদীর কাছে অবস্থিত সাংহাই শহর সবচেয়ে জনবহুল শহর, বৃহত্তম শিল্প ও বাণিজ্য নগরী এবং চীনের প্রধান বন্দর। জলবায়ু চীনের বেশিরভাগ উত্তর নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে অবস্থিত, যা স্বতন্ত্র ঋতু এবং একটি মহাদেশীয় মৌসুমী জলবায়ু দ্বারা চিহ্নিত। বছরের সেপ্টেম্বর থেকে এপ্রিল পর্যন্ত সাইবেরিয়া এবং মঙ্গোলীয় মালভূমি থেকে শুষ্ক ও ঠান্ডা বর্ষা বয়ে যায়, যার ফলে ঠান্ডা ও শুষ্ক শীত হয় এবং উত্তর ও দক্ষিণ চীনের তাপমাত্রার মধ্যে বড় পার্থক্য দেখা যায়। এপ্রিল থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত উষ্ণ এবং আর্দ্র বর্ষা সাগর থেকে পূর্ব ও দক্ষিণে প্রবাহিত হয়, যার ফলে সামগ্রিক উচ্চ তাপমাত্রা এবং প্রচুর বৃষ্টিপাত হয় এবং উত্তর ও দক্ষিণ চীনের মধ্যে তাপমাত্রার সামান্য পার্থক্য হয়। তাপমাত্রার পরিপ্রেক্ষিতে, দেশটিকে দক্ষিণ থেকে উত্তরে নিরক্ষীয়, গ্রীষ্মমণ্ডলীয়, উপক্রান্তীয়, উষ্ণ-নাতিশীতোষ্ণ, নাতিশীতোষ্ণ এবং ঠান্ডা-নাতিশীতোষ্ণ অঞ্চলে ভাগ করা যেতে পারে। বৃষ্টিপাত ধীরে ধীরে দক্ষিণ-পূর্ব উপকূল থেকে উত্তর-পশ্চিম অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে হ্রাস পায়, যেখানে বার্ষিক গড় বৃষ্টিপাত স্থানভেদে ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হয়। দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলীয় এলাকায় এটি ১,৫০০ মিমি; উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে এটি ২০০  মিলিমিটারের নিচে নেমে আসে। ভূমিরূপ চীন একটি পর্বতময় দেশ। এর মোট আয়তনের দুই-তৃতীয়াংশ পর্বত, ছোট পাহাড় এবং মালভূমি নিয়ে গঠিত। আরও সঠিকভাবে বলতে গেলে চীনের ৩৩% উঁচু পর্বত, ২৬% মালভূমি, ১৯% অববাহিকা, ১২% সমতলভূমি এবং প্রায় ১০% ক্ষুদ্র পাহাড়। কয়েক মিলিয়ন বছর আগে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমি সৃষ্টি হয়। আকাশ থেকে দেখলে মনে হবে চীনের ভূভাগ সিঁড়ির মতো পশ্চিম দিক থেকে পূর্বদিকে ধাপে ধাপে নেমে গেছে। সমুদ্র সমতল থেকে ছিংহাই-তিব্বত মালভূমির গড় উচ্চতা ৪০০০ মিটারের বেশি বলে মালভূমিটি "বিশ্বের ছাদ" নামে পরিচিত; এটি চীনের ভূমিরূপের প্রথম সিঁড়ি গঠন করেছে। মালভূমিটিতে অবস্থিত হিমালয়ের অন্যতম প্রধান পর্বতশৃঙ্গ চুমোলাংমা শৃঙ্গের উচ্চতা ৮৮৪৮.১৩ মিটার। আন্তঃমঙ্গোলিয়া মালভূমি, দো-আঁশ মালভূমি, ইয়ুন্নান-কুইচৌ মালভূমি এবং থালিমু অববাহিকা, চুনগার অববাহিকা ও সিছুয়ান অববাহিকা নিয়ে চীনের ভূগোলের দ্বিতীয় সিড়ি গঠিত। এর গড় উচ্চতা ১০০০-২০০০ মিটার। দ্বিতীয় সিড়ির পূর্বপ্রান্ত অতিক্রম করে বড় সিং আনলিন পর্বত, থাইহান শ্যান পাহাড়, উশ্যান পাহাড়, আরস্যুয়ে ফোং শ্যান পাহাড় পূর্বদিকের প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উপকূলীয় এলাকায় বিস্তৃত হয়েছ; এটি তৃতীয় সিঁড়ি। তৃতীয় সিঁড়ির ভূখণ্ড ৫০০-১০০০ মিটার নিচে নেমে গেছে। উত্তর থেকে দক্ষিণ দিক পর্যন্ত বিস্তৃত তৃতীয় সিঁড়িতে উত্তর-পূর্বসমতল-ভূমি, উত্তর চীন সমতল-ভূমি, ইয়াংসি নদীর মধ্য ও নিম্ন অববাহিকা সমতল-ভূমি আর সমতল-ভূমির প্রান্তে নিচু ও ক্ষুদ্র পাহাড় ছড়িয়ে আছে। এরও পূর্বদিকে চীনের মহাদেশীয় সোপান তথা স্বল্প গভীর সাগরীয় এলাকা অর্থাৎ চতুর্থ সিঁড়িটি বিস্তৃত; এর গভীরতা ২০০ মিটারের কিছু কম। অর্থনীতি ক্রয়ক্ষমতার সমতার (Purchasing power parity) বিচারে চীনের অর্থনীতি বিশ্বের ২য় বৃহত্তম। এদেশের জিডিপি (GDP) ৮.১৮৫ ট্রিলিয়ন আমেরিকান ডলার। আমেরিকান ডলার বিনিময় হারের (USD exchange-rate) দিক থেকে দেখলে এর অর্থনীতি বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম (২০০৫ সালের হিসাব)। তথাপি, বিশাল জনসংখ্যার কারণে, চীনের মাথাপিছু আয় (Purchasing power parity-র মাপকাঠিতে) ৬,২০০ আমেরিকান ডলার যা আমেরিকার এক সপ্তমাংশ। ১৯৫০ সালে চীনের কমিউনিস্ট পার্টি দেশের সকল অর্থনৈতিক কর্মকান্ডকে রাষ্ট্রায়ত্ত করে। তবে ১৯৭৮ সালে শুরু হওয়া সংষ্কার কর্মসূচীর আওতায় সরকার আস্তে আস্তে সোভিয়েত ধারার কেন্দ্রীভূত অর্থনৈতিক মডেল থেকে বাজারমূখী অর্থনীতির দিকে সরে আসে। এর ফলে ১৯৮০ সালে চীনে ১০.২% অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি হয় এবং ১৯৯০ থেকে ২০০১ পর্যন্ত গড়ে ১০% অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি অর্জন করা সম্ভব হয়। ২০০১ সালে চীন বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার (World Trade Organization) সদস্য পদ লাভ করে। আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার চীনে এক নতুন গতিপথ সৃষ্টি করেছে। পরিবহন গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের পরিবহন ব্যবস্থায় ১৯৪৯ সালের পর থেকে, বিশেষত ১৯৮০-র দশকের শুরু থেকে ব্যাপক উন্নয়ন ও পরিবর্ধন ঘটেছে। নিত্যনতুন বিমানবন্দর, সড়ক ও রেলপথ নির্মাণের প্রকল্পসমূহ আগামী দশকগুলিতেও চীনের শ্রমবাজারে বিপুল পরিমাণে কাজের সৃষ্টি করবে। রেলপথ চীনের প্রধান পরিবহন ব্যবস্থা। বিংশ শতকের মধ্যভাগের তুলনায় বর্তমান চীনের রেলপথের দৈর্ঘ্য দ্বিগুণ হয়েছে। একটি বিস্তৃত রেলব্যবস্থা বর্তমানে সমগ্র চীন জুড়ে প্রসারিত। বড় বড় শহরগুলিতে পাতাল রেল হয় ইতোমধ্যেই নির্মিত হয়েছে কিংবা নির্মাণাধীন বা পরিকল্পনাধীন অবস্থায় আছে। চীনের সড়ক ও মহাসড়ক ব্যবস্থাতেও দ্রুত পরিবর্ধন সংঘটিত হয়েছে, যার ফলে চীনে মোটরযান ব্যবহারের পরিমাণ আগের চেয়ে বহুগুণ বেড়েছে। বিশালাকার চীনের পরিবহন ব্যবস্থাটিও বহু পরিবহন নোড বা কেন্দ্রের সমন্বয়ে গঠিত বিশাল একটি নেটওয়ার্ক। তবে এই পরিবহন নোডগুলি অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ সমুদ্র-উপকূলীয় এলাকা এবং দেশের অভ্যন্তরে বড় বড় নদীগুলির তীরে অবস্থিত। ভৌগোলিক অবস্থান অনুসারে চীনের পরিবহন অবকাঠামোতে বৈচিত্র্য ও বৈসাদৃশ্য পরিলক্ষিত হয়। প্রত্যন্ত গ্রামীণ অঞ্চলে এখনও অযান্ত্রিক উপায়ে মালামাল পরিবহন ঘটতে দেখা যায়। অন্যদিকে আধুনিক সাংহাই শহর ও তার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরটির মাঝে সম্প্রতি নির্মিত হয়েছে অত্যাধুনিক ম্যাগ্‌লেভ (চৌম্বকীয় উত্তোলন) রেল ব্যবস্থা। চীনের পরিবহন ব্যবস্থার বেশির ভাগই ১৯৪৯ সালে গণপ্রজাতন্ত্রী চীনের প্রতিষ্ঠার পরে নির্মিত হয়েছে। তার আগে চীনের রেলপথের দৈর্ঘ্য ছিল মাত্র ২১,৮০০ কিমি। বর্তমানে চীনের রেলপথের মোট দৈর্ঘ্য ৮৬,০০০ কিমি। ১৯৯০-এর দশকে সরকারি উদ্যোগে চীনের সর্বত্র যোগাযোগ রক্ষাকারী মহাসড়কব্যবস্থা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়, যার ফলে ২০০৯ সালে এসে বর্তমানে মহাসড়ক ব্যবস্থার দৈর্ঘ্য বেড়ে হয়েছে ৬৫,০০০ কিমি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে এটি বিশ্বের ২য় বৃহত্তম মহাসড়ক ব্যবস্থা। ১৯৯০-এর দশকের শেষে এসে চীনের অভ্যন্তরে বিমান ভ্রমণের পরিমাণও ব্যাপক বৃদ্ধি পেয়েছে। তবে এখনও দূরপথে যাত্রার জন্য রেলপথই চীনাদের বেশি পছন্দ। জনগোষ্ঠী পৃথিবীর এক পঞ্চমাংশ জনগোষ্ঠী চীনে বাস করে। এদের মধ্যে ৯২% জাতিগোষ্ঠীর অন্তর্গত। এছাড়াও চীনে আরো ৫৫ জাতিগোষ্ঠীর লোক বসবাস করে। জুলাই ২০০৬ এ হিসেব অনুযায়ী চীনের মোট জনসংখ্যা হবে ১৩১ কোটি ৩৯ লক্ষ ৭৩ হাজার ৭১৩ জন। এর ২০.৮% শতাংশের বয়স ১৪ বছরের নিচে, ৭১.৪% শতাংশের বয়স ১৫ থেকে ৬৪ বছরের মধ্যে এবং ৭.৭ শতাংশের বয়স ৬৫র উপরে। ২০০৬ সালে চীনের জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ছিল .৫৯%। ভাষা চীনের সবচেয়ে বেশি কথিত ভাষাগুলি চৈনিক-তিব্বতি ভাষা পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এছাড়াও চীনা ভাষার ভেতরে একাধিক প্রধান দল আছে। এদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি কথিত ভাষাদলগুলি হল ম্যান্ডারিন চীনা ভাষা (চীনের জনসংখ্যার ৭০% এই দলের ভাষাগুলিতে কথা বলে)), উ (যার মধ্যে সাংহাই ভাষা পড়েছে), ইউয়ে ভাষা (যার মধ্যে ক্যান্টনীয় ভাষা ও তাইশানীয় ভাষা অন্তর্গত), মিন চীনা ভাষা (যার মধ্যে হোক্কিয়েন ও তেওচিউ উপভাষা অন্তর্গত), সিয়াং চীনা ভাষা, গান চীনা ভাষা, এবং হাক্কা চীনা ভাষা। আদিবাসী সংখ্যালঘু গোষ্ঠীদের মধ্যে ব্যাপকভাবে প্রচলিত অ-চৈনিক ভাষাগুলির মধ্যে রয়েছে চুয়াং ভাষাসমূহ, মঙ্গোলীয় ভাষা, তিব্বতি ভাষা, উইগুর ভাষা, হমং ভাষা এবং কোরীয় ভাষা। আদর্শ বা প্রমিত চীনা ভাষা ম্যান্ডারিন ভাষাদলের বেইজিং উপভাষার উপর ভিত্তি করে সৃষ্ট হয়েছে। এটি আনুষ্ঠানিকভাবে চীনের জাতীয় ভাষা এবং বিশাল দেশটির বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের মধ্যে ভাবে আদানপ্রদানের জন্য লিঙ্গুয়া ফ্রাংকা হিসেবে ব্যবহৃত হয়। হাজার বছর ধরে ধ্রুপদী চীনা ভাষা লিখিত চীনা ভাষার আদর্শ মানদন্ড ছিল। এর ফলে চীনের বিভিন্ন পরস্পর-অবোধগম্য ভাষা ও উপভাষার বক্তারা নিজেদের মধ্যে লিখিত মাধ্যমের সাহায্যে যোগাযোগ করতে পারতেন। মিং রাজবংশের আমলে লেখা উপন্যাসগুলিতে ম্যান্ডারিন ভাষার উপর ভিত্তি করে যে লিখিত ভাষার মানদন্ডটি প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, তার নাম পাইহুয়া। এই আদর্শটিকেই ব্যাপকভাবে পরিমার্জন করে ২০শ শতকের শুরুতে জাতীয় আদর্শের মর্যাদা দেওয়া হয়। আজও চীনের উচ্চবিদ্যালয়গুলির পাঠ্যক্রমে ধ্রুপদী চীনা ভাষা শিক্ষা দেওয়া হয়, ফলে বহু চীনাভাষী লোক এটি বুঝতে পারে। ১৯৫৬ সালে চীন সরকার সরলীকৃত চীনা অক্ষরের প্রবর্তন করেন। বর্তমানে এটিই চীনা ভাষার আদর্শ সরকারি লিপি, যা চীনের মূল ভূখণ্ডে ব্যবহার করা হয়। ঐতিহ্যবাহী চীনা অক্ষরগুলি আর ব্যবহৃত হয় না। নগরায়ন জাতীয় প্রতীকসমূহ জাতীয় পতাকা চীনের জাতীয় পতাকাটি পাঁচটি তারকাখচিত একটি লাল পতাকা। এর দৈর্ঘ্য ও উচ্চতার অনুপাত হল ৩:২। চীনের জাতীয় পতাকার লাল রঙ বিপ্লবের নিদর্শন। পতাকাতে পাঁচটি হলুদ রঙের পাঁচ-কোনা তারকা আছে, যাদের মধ্যে একটি বড় ও মূল তারকা। চারটি ছোট তারকার প্রত্যেকটির একটি কোনা মূল তারকার কেন্দ্রস্থলের দিকে মুখ করে আছে। এটি কমিউনিস্ট পার্টির নেতৃত্বাধীন বিপ্লবী জনগণের ঐক্যের নিদর্শন। জাতীয় প্রতীক জাতীয় পতাকা, থিয়েন আনম্যান, চাকা আর ধানের শীষ নিয়ে গণচীনের জাতীয় প্রতীক গঠিত। চীনা সরকারের মতে এটি ৪ঠা মে আন্দোলনের পর চীনা জনগণের চালিত নতুন গণতান্ত্রিক বিপ্লবী সংগ্রাম আর শ্রমিকশ্রেণীর নেতৃত্বাধীন শ্রমিক-কৃষক মৈত্রীর ভিত্তিতে গঠিত জনগণের গণতান্ত্রিক একনায়কত্বের নয়া চীনের প্রতিষ্ঠা জাতীয় সঙ্গীত গণচীনের জাতীয় সঙ্গীত মূলত এক বীরবাহিনীর অগ্রযাত্রার গান। গানটি ১৯৩৫ সালে রচনা করা হয়। গানের কথাগুলো লিখেছেন নাট্যকার থিয়েনহান, আর এটিতে সুর দিয়েছেন চীনের নতুন সংগীত-আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা নিয়ের আর। গানটি প্রকৃতপক্ষে সংগ্রামের অগ্রগামী সন্তানেরা নামক চীনা চলচ্চিত্রের থিম-সঙ্গীত। ১৯৩১ সালের ১৮ই সেপ্টেম্বর জাপান চীনের উত্তর-পূর্ব অঞ্চলের তিনটি প্রদেশ দখল করে। চীনারা জাপানিদের হটাতে যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়ে, চলচ্চিত্রটিতে সে কাহিনী বর্ণনা করা হয়েছে। চলচ্চিত্রটি মুক্তি পাওয়ার পর এই সঙ্গীতটি সমগ্র চীনে মুক্তিসঙ্গীত হিসেবে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৪৯ সালের ২৭শে সেপ্টেম্বর চীনা জনগণের রাজনৈতিক পরামর্শ সম্মেলনের প্রথম পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে গণচীনের জাতীয় সঙ্গীত আনুষ্ঠানিকভাবে তৈরি না হওয়া পর্যন্ত বীরবাহিনীর অগ্রযাত্রার গানটিকে জাতীয় সঙ্গীত হিসেবে গ্রহণ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। গ্রন্থ, রচনা ও ওয়েব উৎসের তালিকা এনসাইক্লোপেডিয়া ব্রিটানিকা মাইক্রোসফট এনকার্টা ইংরেজি উইকিপিডিয়া চীন আন্তর্জাতিক বেতার আমার গণচীন জানুন তথ্যসূত্র টীকা এশিয়ার রাষ্ট্র পূর্ব এশিয়া একদলীয় রাষ্ট্র ১৯৪৯-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল চীন জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ব্রিক্‌স রাষ্ট্র ই৭ রাষ্ট্র জি২০ সদস্য সাংহাই সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র উত্তর-পূর্ব এশীয় রাষ্ট্র গণপ্রজাতন্ত্রী চীন সমাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্র প্রজাতন্ত্র সীমিত স্বীকৃতির রাষ্ট্র সভ্যতার সূতিকাগার সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/China
China
China, officially the People's Republic of China (PRC), is a country in East Asia. With a population exceeding 1.4 billion, it is the world's second-most populous country after India, representing 17.4% of the world population. China spans the equivalent of five time zones and borders fourteen countries by land. With an area of nearly 9.6 million square kilometers (3,700,000 sq mi), it is the third-largest country by total land area. The country is divided into 33 province-level divisions: 22 provinces, five autonomous regions, four municipalities, and two semi-autonomous special administrative regions. Beijing is the country's capital, while Shanghai is its most populous city by urban area and largest financial center. China is considered one of the cradles of civilization: the first human inhabitants in the region arrived during the Paleolithic; by the late second millennium BCE, the earliest dynastic states had emerged in the Yellow River basin. The eighth to third centuries BCE saw a breakdown in the authority of the Zhou dynasty, accompanied by the emergence of administrative and military techniques, literature, philosophy, and historiography. In 221 BCE, China was unified under an emperor for the first time. Appointed non-hereditary officials began ruling counties instead of the aristocracy, ushering in more than two millennia of imperial dynasties including the Qin, Han, Tang, Yuan, Ming, and Qing. With the invention of gunpowder and paper, the establishment of the Silk Road, and the building of the Great Wall, Chinese culture—including languages, traditions, architecture, philosophy and technology—flourished and has heavily influenced both its neighbors and lands further afield. However, China began to cede parts of the country in the late 19th century to various European powers by a series of unequal treaties. After decades of struggle, the 1911 Revolution resulted in the overthrow of the monarchy and the establishment of the Republic of China (ROC) the following year. The country under the nascent Beiyang government was unstable and ultimately fragmented during the Warlord Era, which was ended upon the Northern Expedition conducted by the Kuomintang (KMT) to reunify the country. The Chinese Civil War began in 1927, when KMT forces purged members of the rival Chinese Communist Party (CCP), who proceeded to engage in sporadic fighting against the KMT-led Nationalist government. Following the country's invasion by the Empire of Japan in 1937, the KMT and CCP temporarily agreed to a truce in favor of a united front against the Japanese. The Second Sino-Japanese War eventually ended in a Chinese victory; however, atrocities such as the Nanjing Massacre had a lasting impact on the country. The end of war with Japan in 1945 was quickly followed by a resumption of hostilities between the KMT and CCP. In 1949, the resurgent Communists established control over most of the country, proclaiming the People's Republic of China and forcing the Nationalist government to retreat to the island of Taiwan. The country was split, with both sides claiming to be the sole legitimate government of China. Following the implementation of land reforms, further attempts by the PRC to realize communism failed: the Great Leap Forward was largely responsible for the Great Chinese Famine that ended with millions of Chinese people having died, and the subsequent Cultural Revolution was a period of social turmoil and persecution characterized by Maoist populism. Following the Sino-Soviet split, the Shanghai Communiqué in 1972 would precipitate the normalization of relations with the United States. Economic reforms that began in 1978 led by reformists within the CCP moved the country away from a socialist planned economy towards an increasingly capitalist market economy, spurring significant economic growth. The corresponding movement for increased democracy and liberalization stalled after the Tiananmen Square protests and massacre in 1989. China is a unitary one-party socialist republic led by the CCP. It is one of the five permanent members of the UN Security Council; the UN representative for China was changed from the ROC to the PRC in 1971. It is a founding member of several multilateral and regional organizations such as the AIIB, the Silk Road Fund, the New Development Bank, and the RCEP. It is a member of the BRICS, the G20, APEC, the SCO, and the East Asia Summit. Making up around one-fifth of the world economy, the Chinese economy is the world's largest economy by GDP at purchasing power parity, the second-largest economy by nominal GDP, and the second-wealthiest country, albeit ranking poorly in measures of democracy, human rights and religious freedom. The country has been one of the fastest-growing major economies and is the world's largest manufacturer and exporter, as well as the second-largest importer. China is a nuclear-weapon state with the world's largest standing army by military personnel and the second-largest defense budget. It is a great power and a regional power, and has been described as an emerging superpower. China is known for its cuisine and culture, and has 59 UNESCO World Heritage Sites, the second-highest number of any country.
1325
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8C%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%95%E0%A6%A4%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%A6
পৌত্তলিকতাবাদ
পৌত্তলিকতাবাদ বা পেগানবাদ (লাতিন পেগানাস থেকে এসেছে) (ইংরেজি: Paganism) একটি শব্দ, যার অর্থ খ্রিস্টীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখলে দাঁড়ায় ইব্রাহিমীয় ধর্মমত বহির্ভূত সংস্কৃতির কিছু আত্মিক ও সামাজিক আচার ও বিশ্বাস। মূর্তিপূজা বা প্রতিমাপূজাকে পৌত্তলিকতাবাদের অন্যতম প্রধান বৈশিষ্ট্য হিসাবে গণ্য করা হয়। এটি মূলত একটি ঐতিহাসিক প্রেক্ষাপটে, গ্রিকো রোমান বহুদেববাদ হিসেবে ইউরোপ এবং উত্তর আফ্রিকার খ্রিস্টান ধর্মের প্রসারের আগে বহু ঈশ্বরবাদী ঐতিহ্যে ব্যবহার করা হয়। ব্যাপক অর্থে, প্রসারিত সমকালীন ধর্মগুলোতে এটি অধিকাংশ পূর্বাঞ্চলীয় ধর্ম এবং আমেরিকা, মধ্য এশিয়া, অস্ট্রেলিয়া ও আফ্রিকার আদিবাসী ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত; এবং সেইসাথে সাধারণভাবে অ-আব্রাহামীয় লোকধর্মকেও এটির অন্তর্ভুক্ত করা হয়। যদিও প্যাগানবাদের আদিরূপটি ভিন্ন । এটি মূলত প্রকৃতি পূজার সঙ্গে সম্পৃক্ত ছিল।প্রকৃতির শক্তির বিভিন্ন রূপ ও সর্বেশ্বরবাদ এর মূল ভিত্তি ছিল আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ ধর্মীয় বিশ্বাস, ঐতিহ্য ও আন্দোলন পৌত্তলিকতা খ্রিস্টান পরিভাষা
https://en.wikipedia.org/wiki/Paganism
Paganism
Paganism (from classical Latin pāgānus "rural", "rustic", later "civilian") is a term first used in the fourth century by early Christians for people in the Roman Empire who practiced polytheism, or ethnic religions other than Judaism. In the time of the Roman Empire, individuals fell into the pagan class either because they were increasingly rural and provincial relative to the Christian population, or because they were not milites Christi (soldiers of Christ). Alternative terms used in Christian texts were hellene, gentile, and heathen. Ritual sacrifice was an integral part of ancient Greco-Roman religion and was regarded as an indication of whether a person was pagan or Christian. Paganism has broadly connoted the "religion of the peasantry". During and after the Middle Ages, the term paganism was applied to any non-Christian religion, and the term presumed a belief in "false gods". The origin of the application of the term "pagan" to polytheism is debated. In the 19th century, paganism was adopted as a self-descriptor by members of various artistic groups inspired by the ancient world. In the 20th century, it came to be applied as a self-descriptor by practitioners of modern paganism, modern pagan movements and Polytheistic reconstructionists. Modern pagan traditions often incorporate beliefs or practices, such as nature worship, that are different from those of the largest world religions. Contemporary knowledge of old pagan religions and beliefs comes from several sources, including anthropological field research records, the evidence of archaeological artifacts, and the historical accounts of ancient writers regarding cultures known to Classical antiquity. Most modern pagan religions existing today express a worldview that is pantheistic, panentheistic, polytheistic, or animistic, but some are monotheistic.
1326
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%A1%E0%A6%BE
প্যাগোডা
প্যাগোডা (ইংরেজি pagoda) হলো স্তরে স্তরে নির্মিত টাওয়ার জাতীয় ভবন, যা চীন, জাপান, কোরিয়া, নেপালসহ পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বেশ কিছু দেশে দেখা যায়। অধিকাংশ প্যাগোডাই নির্মিত হয়েছে বৌদ্ধ মন্দির হিসাবে। এবং সাধারনত বৌদ্ধ বিহারের কাছাকাছি অবস্থান করে। অনেক দেশে প্যাগোডা শব্দটি অন্য ধর্মীয় স্থাপনাকে বুঝায়। ফরাসী ভাষার অনুবাদ হিসাবে ভিয়েতনামে এবং কম্বোডিয়ায় প্যাগোডাকে ধর্মীয় উপাসনালয় হিসাবে মনে করা হয় যদিও ’প্যাগোডা’ ’বিহার’ এর সঠিক প্রতিশব্দ নয়। আধুনিক প্যাগোডা হল প্রাচীন নেপালি স্তুপার একটি বিবর্তিত রূপ, অনেকটা সামাধী মন্দিরের মতো যেখানে পবিত্র পুরানিদর্শন রাখা হত। মায়ানমারের বৌদ্ধমন্দির গুলি প্যাগোডা নামে পরিচিত ৷ যেমন: সোয়েড্যাগন প্যাগোডা অন্যতম৷ মায়ানমারে এই রকম প্যাগোডা প্রচুর দেখা যায় বলে মায়ানমারকে প্যাগোডার দেশ বলে ৷ ইতিহাস খ্রিস্টপূর্ব তৃতীয় শতাব্দীতে প্রচলিত স্তুপা থেকে প্যাগোডার উৎপত্তি। স্তূপ হল একটি গম্বুজ আকৃতির স্মৃতিসৌধ, যেথানে একটি পবিত্র স্মারক সংরক্ষণ করা হত। তথ্যসূত্র বৌদ্ধধর্ম ধর্মীয় উপাসনালয় বৌদ্ধ ভবন বৌদ্ধ বিহার সুউচ্চ স্থাপনা বৌদ্ধ স্থাপত্য চৈনিক স্থাপত্য ইতিহাস কোরীয় স্থাপত্য ভবনের ধরন নেপালের স্থাপত্য
https://en.wikipedia.org/wiki/Pagoda
Pagoda
A pagoda is a tiered tower with multiple eaves common to Thailand, Cambodia, Nepal, China, Japan, Korea, Myanmar, Vietnam, and other parts of Asia. Most pagodas were built to have a religious function, most often Buddhist, but sometimes Taoist, and were often located in or near viharas. The pagoda traces its origins to the stupa, while its design was developed in ancient India. Chinese pagodas (Chinese: 塔; pinyin: Tǎ) are a traditional part of Chinese architecture. In addition to religious use, since ancient times Chinese pagodas have been praised for the spectacular views they offer, and many classical poems attest to the joy of scaling pagodas. The oldest and tallest pagodas were built of wood, but most that survived were built of brick or stone. Some pagodas are solid with no interior. Hollow pagodas have no higher floors or rooms, but the interior often contains an altar or a smaller pagoda, as well as a series of staircases for the visitor to climb to see the view from an opening on one side of each tier. Most have between three and 13 tiers (almost always an odd number) and the classic gradual tiered eaves. In some countries, the term may refer to other religious structures. In Vietnam and Cambodia, due to French translation, the English term pagoda is a more generic term referring to a place of worship, although pagoda is not an accurate word to describe a Buddhist vihara. The architectural structure of the stupa has spread across Asia, taking on many diverse forms specific to each region. Many Philippine bell towers are highly influenced by pagodas through Chinese workers hired by the Spaniards.
1328
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B9
গ্রহ
গ্রহ বলতে জ্যোতির্বিজ্ঞানে মহাবিশ্বের এমন যেকোন বস্তুকে বোঝানো হয় যার কেবলমাত্র নিজের মহাকর্ষ বলের প্রভাবে গোলাকার রূপ ধারণ করার ক্ষমতা আছে, যা তার নিকটতম নক্ষত্রকে কেন্দ্র করে ঘুরে, যার ভর তাপ-নিউক্লিয় বিক্রিয়া শুরু করে সূর্যের মত শক্তি উৎপাদনের জন্য যথেষ্ট নয়, যে তার একদম নিকটে থাকা নক্ষত্র কে কেন্দ্র করে ঘুরছে এবং যে তার প্রতিবেশের সব ছোট ছোট বস্তুকে সরিয়ে দিয়েছে বা নিজের মধ্যে অধিগ্রহণ করে নিয়েছে। সাধারণত গ্রহরা কোন না কোন তারা বা নাক্ষত্রিক ধ্বংসাবশেষকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হয়, তবে এর ব্যতিক্রম থাকার সম্ভাবনাও অনেকে ব্যক্ত করেছেন। গ্রহের ইংরেজি প্রতিশব্দ planet-এর মূল বেশ প্রাচীনকালে প্রোথিত যার সাথে জড়িয়ে আছে অনেক ঐতিহাসিক, বৈজ্ঞানিক, পৌরাণিক ও ধর্মীয় বিষয়াদি। প্রাচীনকালের অনেক সংস্কৃতিতেই গ্রহদেরকে স্বর্গীয় বা দেবতাদের দূত ভাবা হতো। মানুষের জ্ঞানের সীমা বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথে এই ধারণারও পরিবর্তন হয়েছে। বর্তমানে আমরা জানি এরা কিছু জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু বৈ অন্য কিছু নয়। ২০০৬ সালে ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন একটি আনুষ্ঠানিক সিদ্ধান্তের মাধ্যমে সৌরজগতের গ্রহগুলোর সুস্পষ্ট সংজ্ঞা নির্ধারিত করে। এই আধুনিক সংজ্ঞা অনুসারে ১৯৫০ সালের পূর্বে আবিষ্কৃত গ্রহগুলোর মধ্যে কেবল ৮টিকে গ্রহের মর্যাদায় বহাল রাখা হয়। কিন্তু সেরেস, পালাস, জুনো, ভেস্তা এবং প্লুটোর মত কিছু বস্তু যাদের কোন কোনটিকে আগে অনেক বিজ্ঞানী গ্রহ বলতেন, তাদের সবগুলোকেই গ্রহের তালিকা থেকে বাদ দেয়া হয়েছে। গ্রিক জ্যোতির্বিদ টলেমি মনে করতেন গ্রহরা পৃথিবীর চারদিকে কিছু ডিফারেন্ট এবং এপিসাইকেল-এর মাধ্যমে আবর্তিত হয়। গ্রহরা যে সূর্যকে আবর্তন করছে এই ধারণা আগে বেশ কয়েকবার প্রস্তাবিত হলেও সপ্তদশ শতকে গালিলেও গালিলেই-এর দুরবিন দিয়ে করা পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই তা প্রথমবারের মত সুস্পষ্টভাবে প্রমাণিত হয়। পর্যবেক্ষণকৃত উপাত্ত গভীরভাবে বিশ্লেষণ করে জার্মান জ্যোতির্বিদ ইয়োহানেস কেপলার সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছিলেন গ্রহদের কক্ষপথ বৃত্তাকার নয়, বরং উপবৃত্তাকার। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের পর্যবেক্ষণের যন্ত্রের দিন দিন উন্নতি হওয়ায় ধীরে ধীরে জানা গেছে যে, অন্য গ্রহগুলোরও ঘূর্ণন অক্ষ খানিকটা আনত এবং অনেকগুলোর পৃথিবীর মতই মেরু বরফ এবং ঋতু পরিবর্তন রয়েছে। খুব সাম্প্রতিক সময়ের কিছু গবেষণা বলছে, অন্য গুহগুলোতে পৃথিবীর মত অগ্ন্যুৎপাত, হারিকেন, প্লেট টেকটোনিক এবং এমনকি পানিও আছে। গ্রহদেরকে প্রধানত দুই ভাগে ভাগ করা হয়: বৃহৎ স্বল্প ঘনত্বের গ্যাসীয় দানব এবং পাথুরে ভূসদৃশ গ্রহ। সৌরজগতে গ্রহের সংখ্যা আটটি। সূর্য থেকে বাইরের দিকে গেলে প্রথম চারটি গ্রহ হচ্ছে ভূসদৃশ, যথা, বুধ, শুক্র, পৃথিবী এবং মঙ্গল। এর পর চারটি গ্যাসীয় দানব: বৃহস্পতি, শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুন। এর মধ্যে ছয়টি গ্রহেরই এক বা একাধিক উপগ্রহ রয়েছে। এর পাশাপাশি আইএইউ সংজ্ঞা অনুযায়ী রয়েছে ৬টি বামন গ্রহ, এছাড়া আরও অনেকগুলো বামন গ্রহের তালিকাভূক্ত হওয়ার অপেক্ষায় আছে, আর আছে হাজার হাজার ক্ষুদ্র সৌর জাগতিক বস্তু। ১৯৯২ সাল থেকে আকাশগঙ্গার অন্যান্য তারার চারপাশে অনেক গ্রহ আবিষ্কৃত হয়ে আসছে, যাদেরকে বহির্গ্রহ বলা হয়। ২০১৩ সালের ২২শে মে তারিখ পর্যন্ত নিশ্চিতভাবে আবিষ্কৃত মোট বহির্গ্রহের সংখ্যা হচ্ছে ৮৮৯, মোট গ্রহ জগতের সংখ্যা ৬৯৪ এবং মোট একাধিক গ্রহবিশিষ্ট জগতের সংখ্যা ১৩৩। এদের আকার এবং ভর পৃথিবীর মত থেকে শুরু করে বৃহস্পতির চেয়ে অনেক বেশি পর্যন্ত হতে পারে। ২০১১ সালের ২০শে ডিসেম্বর কেপলার মহাকাশ দুরবিন প্রথম পৃথিবীর সমান আকারের বহির্গ্রহ, কেপলার ২০ই ও কেপলার ২০এফ আবিষ্কারের ঘোষণা দেয়। তারা কেপলার ২০ তারাটিকে কেন্দ্র করে আবর্তিত হচ্ছে। ২০১২ সালের একটি গবেষণায় বলা হয়েছে আকাশগঙ্গার প্রতিটি তারার চারপাশে গড়ে ১.৬টি করে গ্রহ থাকতে পারে, এছাড়া থাকতে পারে আরও অনেক নিঃসঙ্গ গ্রহ যারা কোন তারাকে আবর্তন করে না। ২০১৩ সালের জানুয়ারিতে হার্ভার্ড স্মিথসোনিয়ান সেন্টার ফর অ্যাস্ট্রোফিজিক্সের বিজ্ঞানীরা ঘোষণা করেন, আকাশগঙ্গায় পৃথিবীর সাথে তুলনীয় আকারের (পৃথিবীর ভরের ০.৮ থেকে ১.২৫ গুণ) অন্তত ১৭০০ কোটি বহির্গ্রহ থাকার সম্ভাবনা রয়েছে যারা তাদের তারাকে ৮৫ দিন বা তার কম সময়ে একবার আবর্তন করে। ব্যুৎপত্তি প্রাচীনকালে জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা বিশেষভাবে লক্ষ করতেন, কীভাবে নির্দিষ্ট কিছু আলো আকাশের বিভিন্ন স্থানে দেখা যেতো যার সাথে অন্যান্য তারার আলোর পার্থক্য রয়েছে। অর্থাৎ এই আলোগুলো তারা ছিল না; তারা মনে করতো এগুলো পৃথিবীর চারিদিকে একটি নির্দিষ্ট কক্ষপথে অবস্থান করছে এবং স্থির অবস্থায় আছে। এই আলোগুলোকে প্রথম প্রথম প্রাচীনকালের গ্রিকরা πλανήτης (planētēs) নামে অভিহিত করতো। এই গ্রিক শব্দটির অর্থ হল বিক্ষিপ্তভাবে পরিভ্রমনকারী। সকলের ধারণা মতে এই শব্দটি থেকেই planet শব্দ উৎপত্তি লাভ করেছে। আর planet শব্দের বাংলা হিসেবে গ্রহ শব্দটি ব্যবহৃত হয়। পশ্চিমা বিশ্বে নিকট-মহাবিশ্বের পরিমণ্ডলে তথা সৌর জগতে অবস্থিত এই গ্রহগুলোর নামকরণ করা হয়েছে গ্রিকো-রোমান দেবতাদের নামে। গ্রহের এই নামগুলো গ্রিকরাই রেখেছিল। অবশ্য দেবতাদের নামে গ্রহের নামকরণের সূচনা করেছিল প্রাচীন পশ্চিমের সুমেরীয় সভ্যতার মানুষেরা, প্রায় ৩০০০ খ্রিস্টপূর্বাব্দে বর্তমানে ইরাকে এই সভ্যতার উৎপত্তি ঘটেছিল। পরবর্তীতে মেসোপটেমিয়া সভ্যতায় এই নামগুলো গৃহীত হয়েছিল যদিও নামগুলোকে তারা উচ্চারণের সুবিধার্থে নিজেদের মত করে নিয়েছিল। উদাহরণস্বরুপ: ব্যাবিলনীয়দের নামকরণ পদ্ধতির উল্লেখ করা যায়। গ্রিকরা তাদের জ্যোতির্বিজ্ঞান এবং রাশিচক্রের মূল নামকরণগুলো এই ব্যাবিলনীয়দের কাছ থেকেই ধার করেছিল। খ্রিস্টপূর্ব ৬০০ অব্দে গ্রিসে ব্যাবিলনিয়ার তত্ত্ব ও নামগুলোর ব্যবহার শুরু হয়। গ্রিকরা ব্যাবিলনীয় নামের তালিকায় অনেকগুলো নামের পরিবর্তে তাদের নিজেদের দেবতাদের নাম যোগ করে দিয়েছিল। অবশ্য নামের এই অনুবাদে অনেক সন্দেহ রয়ে যায়: যেমন, ব্যাবিলনিয়ার মতে একটি জ্যোতিষ্কের নাম ছিল তাদের যুদ্ধ দেবতা নেরগুল-এর নাম অনুসারে, গ্রিকরা এই জ্যোতিষ্কের নাম রাখে তাদের যুদ্ধ দেবতা এরেসের নামে। কিন্তু এরিস এবং নেরগুলের মধ্যে অনেক পার্থক্য রয়েছে; এরিস শুধু যুদ্ধ দেবতা ছিল, কিনবতু নেরগুল একইসাথে মৃত্যু এবং মহামারীর দেবতা ছিল। পরবর্তীতে রোমান সম্রাজ্যের কর্তৃত্ব এবং তারও পরে রোমান ক্যাথলিক চার্চের একাধিপত্যের কারণে কয়েক শতাব্দী জুড়ে গ্রিক নামগুলোর পরিবর্তে রোমান তথা ল্যাটিন নামগুলোই ব্যবহৃত হয়েছে। সৌর জগৎ গ্রহসমূহের ও তাদের বৈশিষ্ট্য নাসার (21 oct, 2019) তথ্য মতে বৃহস্পতির উপগ্রহের সংখ্যা ৭৯ টি এবং শনির সংখ্যা ৮২ টি। তাই শনির উপগ্রহের সংখ্যা বেশি ধরা যায় । প্লানেট নাইন সৌরজগতে আরও একটি গ্রহের সন্ধান মিলেছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। আঁধারে থাকা ও বরফে আচ্ছাদিত এই গ্রহটির নাম দেওয়া হয়েছে ‘প্লানেট নাইন’ বা নবম গ্রহ। বুধবার এক ঘোষণায় ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির একদল মহাকাশ বিজ্ঞানী নতুন এ গ্রহের সন্ধান পাওয়ার দাবি করেন। গ্রহটি পৃথিবী থেকে ৫ থেকে ১০ গুণ বড়।পৃথিবীর চেয়ে এর ব্যাস দ্বিগুণ থেকে চারগুণ বেশি।এটি সৌরজগতে পঞ্চম বৃহত্তম গ্রহ।সূর্য থেকে দূরত্ব খুব বেশি হওয়ার কারণেই গ্রহটিতে খুবই কম আলো পৌঁছায়। পাদটীকা তথ্যসূত্র গ্রহ মূল বিষয়ের নিবন্ধ পর্যবেক্ষণমূলক জ্যোতির্বিজ্ঞান গ্রহ বিজ্ঞান
https://en.wikipedia.org/wiki/Planet
Planet
A planet is a large, rounded astronomical body that is generally required to be in orbit around a star, stellar remnant, or brown dwarf, and is not one itself. The Solar System has eight planets by the most restrictive definition of the term: the terrestrial planets Mercury, Venus, Earth, and Mars, and the giant planets Jupiter, Saturn, Uranus, and Neptune. The best available theory of planet formation is the nebular hypothesis, which posits that an interstellar cloud collapses out of a nebula to create a young protostar orbited by a protoplanetary disk. Planets grow in this disk by the gradual accumulation of material driven by gravity, a process called accretion. The word planet comes from the Greek πλανήται (planḗtai) 'wanderers'. In antiquity, this word referred to the Sun, Moon, and five points of light visible to the naked eye that moved across the background of the stars—namely, Mercury, Venus, Mars, Jupiter, and Saturn. Planets have historically had religious associations: multiple cultures identified celestial bodies with gods, and these connections with mythology and folklore persist in the schemes for naming newly discovered Solar System bodies. Earth itself was recognized as a planet when heliocentrism supplanted geocentrism during the 16th and 17th centuries. With the development of the telescope, the meaning of planet broadened to include objects only visible with assistance: the moons of the planets beyond Earth; the ice giants Uranus and Neptune; Ceres and other bodies later recognized to be part of the asteroid belt; and Pluto, later found to be the largest member of the collection of icy bodies known as the Kuiper belt. The discovery of other large objects in the Kuiper belt, particularly Eris, spurred debate about how exactly to define a planet. In 2006, the International Astronomical Union (IAU) adopted a definition of a planet in the Solar System, placing the four terrestrial planets and the four giant planets in the planet category; Ceres, Pluto, and Eris are in the category of dwarf planet. Many planetary scientists have nonetheless continued to apply the term planet more broadly, including dwarf planets as well as rounded satellites like the Moon. Further advances in astronomy led to the discovery of over five thousand planets outside the Solar System, termed exoplanets. These often show unusual features that the Solar System planets do not show, such as hot Jupiters—giant planets that orbit close to their parent stars, like 51 Pegasi b—and extremely eccentric orbits, such as HD 20782 b. The discovery of brown dwarfs and planets larger than Jupiter also spurred debate on the definition, regarding where exactly to draw the line between a planet and a star. Multiple exoplanets have been found to orbit in the habitable zones of their stars (where liquid water can potentially exist on a planetary surface), but Earth remains the only planet known to support life.
1329
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%89%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AD%E0%A6%BF%E0%A6%A6
উদ্ভিদ
উদ্ভিদ জীবজগতের একটি বড় গোষ্ঠী যাদের অধিকাংশই সালোকসংশ্লেষনের মাধ্যমে শর্করা-জাতীয় খাদ্য তৈরি করতে পারে এবং এরা গমন করতে পারে না। অবশ্য কিছু এককোষী উদ্ভিদ গমনে সক্ষম। বৃক্ষ, গুল্ম, বিরুৎ ইত্যাদি উদ্ভিদ জগতের অন্তর্গত। পৃথিবীতে প্রায় ৩৫০,০০০ প্রজাতির উদ্ভিদ আছে বলে ধারণা করা হয়। এর মধ্যে ২০০৪ সাল পর্যন্ত প্রায় ২৮৭,৬৫৫টি প্রজাতিকে শনাক্ত করা গেছে। এর মধ্যে ২৫৮,৬৫০টি হলো সপুষ্পক উদ্ভিদ। বৃক্ষ বহুবর্ষজীবী কাষ্ঠবহুল উদ্ভিদ। বৃক্ষকে এভাবে সংজ্ঞায়িত করা হয়: কাষ্ঠবহুল উদ্ভিদ যার মাটি থেকে সুস্পষ্ট শীর্ষ প্রকটতা বিশিষ্ট একটি একক প্রধান কাণ্ড অথবা গুঁড়ি থেকে বহুধাবিভক্ত অপ্রধান শাখা বিকশিত হয়। কিছু লেখকের মতে পূর্ণ বিকশিত অবস্থায় বৃক্ষের ন্যূনতম উচ্চতা ৩ মিটার[২] থেকে ৬ মিটার হওয়া উচিত।[৩] আবার কিছু লেখক গাছের কাণ্ডের ন্যূনতম ব্যাস নির্ধারণ করেছেন ১০ সেমি। গুল্ম জাতীয় উদ্ভিদ বৃক্ষ থেকে ছোট হয় এবং এর কাণ্ড, শাখা প্রশাখা শক্ত হলেও বৃক্ষের কাণ্ড, শাখা প্রশাখা থেকে ছোট ও চিকন হয় গুল্মের মূল মাটির খুব বেশি গভীরে যায় না। এই উদ্ভিদের প্রধান কাণ্ডটির সারা গায়ে শাখা গজায়। বিরুৎ এর কাণ্ড, শাখা প্রশাখা নরম হয়। আকারে ছোট হয়। উদ্ভিদের প্রাণ আছে এটা প্রথম বৈজ্ঞানিকভাবে প্রমাণ করেন স্যার জগদীশ চন্দ্র বসু। আরও দেখুন জীবমণ্ডল অঙ্কুরোদ্গম উদ্ভিদ ও ফলের ছবি তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Answers to several questions from curious kids about plants Index Nominum Algarum Interactive Cronquist classification Plant Photo Gallery of Japan - Flavon's Wild herb and Alpine plants Plant Picture Gallery Plant Resources of Tropical Africa www.prota.org - PROTA’s mission Tree of Life উদ্ভিদসংক্রান্ত এবং উদ্ভিদসমূহের ডেটাবেস African Plants Initiative database Australia Chilean plants at Chilebosque e-Floras (Flora of China, Flora of North America and others) Flora Europaea Flora of Central Europe Flora of North America List of Japanese Wild Plants Online Meet the Plants-National Tropical Botanical Garden Native Plant Information Network All things Plants Database United States Department of Agriculture জীব মূল বিষয়ের নিবন্ধ
https://en.wikipedia.org/wiki/Plant
Plant
Plants are the eukaryotes that form the kingdom Plantae; they are predominantly photosynthetic. This means that they obtain their energy from sunlight, using chloroplasts derived from endosymbiosis with cyanobacteria to produce sugars from carbon dioxide and water, using the green pigment chlorophyll. Exceptions are parasitic plants that have lost the genes for chlorophyll and photosynthesis, and obtain their energy from other plants or fungi. Historically, as in Aristotle's biology, the plant kingdom encompassed all living things that were not animals, and included algae and fungi. Definitions have narrowed since then; current definitions exclude the fungi and some of the algae. By the definition used in this article, plants form the clade Viridiplantae (green plants), which consists of the green algae and the embryophytes or land plants (hornworts, liverworts, mosses, lycophytes, ferns, conifers and other gymnosperms, and flowering plants). A definition based on genomes includes the Viridiplantae, along with the red algae and the glaucophytes, in the clade Archaeplastida. There are about 380,000 known species of plants, of which the majority, some 260,000, produce seeds. They range in size from single cells to the tallest trees. Green plants provide a substantial proportion of the world's molecular oxygen; the sugars they create supply the energy for most of Earth's ecosystems and other organisms, including animals, either consume plants directly or rely on organisms which do so. Grain, fruit, and vegetables are basic human foods and have been domesticated for millennia. People use plants for many purposes, such as building materials, ornaments, writing materials, and, in great variety, for medicines. The scientific study of plants is known as botany, a branch of biology.
1330
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8B%E0%A6%AA
পোপ
পোপ (লাতিন: papa, গ্রীক থেকে: πάππας, রোমানাইজড: পাপ্পাস, 'ফাদার'), সর্বোচ্চ পোপ (পন্টিফেক্স ম্যাক্সিমাস বা সামাস পন্টিফেক্স), রোমান পোন্টিফ (রোমানাস পন্টিফেক্স) বা সার্বভৌম পোপ নামেও পরিচিত, রোমের বিশপ (বা ঐতিহাসিকভাবে রোমের পিতৃপুরুষ), বিশ্বব্যাপী ক্যাথলিক চার্চের প্রধান এবং ভ্যাটিকান সিটি স্টেটের রাষ্ট্রপ্রধান বা সার্বভৌম। ক্যাথলিক দৃষ্টিকোণ থেকে, রোমের বিশপের আদিমতা মূলত সেন্ট পিটারের প্রেরিত উত্তরাধিকারী হিসাবে তার ভূমিকা থেকে উদ্ভূত হয়, যাকে যীশু প্রধানতা প্রদান করেছিলেন, যিনি পিটারকে স্বর্গের চাবি এবং "বাঁধা ও হারানোর" ক্ষমতা দিয়েছিলেন। , তাকে "শিলা" হিসাবে নামকরণ করে যার উপর চার্চ নির্মিত হবে। বর্তমান পোপ হলেন ফ্রান্সিস, যিনি ১৩ মার্চ ২০১৩-এ নির্বাচিত হন যদিও তার অফিসকে প্যাপসি বলা হয়, এপিসকোপাল সী এর এখতিয়ারকে হলি সি বলা হয়। এটি হলি সি যা আন্তর্জাতিক আইন দ্বারা সার্বভৌম সত্তা যা স্বতন্ত্রভাবে স্বাধীন ভ্যাটিকান সিটি রাজ্যে অবস্থিত, একটি শহর-রাষ্ট্র যা রোমের সংলগ্ন মধ্যে একটি ভৌগোলিক ছিটমহল গঠন করে, ইতালি এবং হলি সি এর মধ্যে 1929 সালে ল্যাটারান চুক্তি দ্বারা প্রতিষ্ঠিত এর সাময়িক এবং আধ্যাত্মিক স্বাধীনতা নিশ্চিত করতে। হলি সি আন্তর্জাতিক সংস্থার বিভিন্ন স্তরে আনুগত্য এবং অনেক স্বাধীন রাষ্ট্রের সাথে এর কূটনৈতিক সম্পর্ক এবং রাজনৈতিক চুক্তির মাধ্যমে স্বীকৃত। ক্যাথলিক ঐতিহ্য অনুসারে, প্রথম শতাব্দীতে সেন্ট পিটার এবং সেন্ট পল দ্বারা রোমের অ্যাপোস্টোলিক সিজ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। পোপপদ বিশ্বের সবচেয়ে স্থায়ী প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে একটি এবং বিশ্বের ইতিহাসে একটি বিশিষ্ট অংশ রয়েছে। প্রাচীনকালে পোপরা খ্রিস্টধর্মের প্রসারে সাহায্য করতেন এবং বিভিন্ন মতবাদের বিরোধের সমাধানের জন্য হস্তক্ষেপ করতেন। মধ্যযুগে, তারা পশ্চিম ইউরোপে ধর্মনিরপেক্ষ গুরুত্বের ভূমিকা পালন করেছিল, প্রায়ই খ্রিস্টান রাজাদের মধ্যে মধ্যস্থতাকারী হিসাবে কাজ করে। এবং আন্তঃধর্মীয় সংলাপ, দাতব্য কাজ, এবং মানবাধিকার রক্ষা।[12][13] সময়ের সাথে সাথে পোপতন্ত্র ব্যাপক ধর্মনিরপেক্ষ এবং রাজনৈতিক প্রভাব অর্জন করে, শেষ পর্যন্ত আঞ্চলিক শাসকদের প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সাম্প্রতিক শতাব্দীতে পোপতন্ত্রের সাময়িক কর্তৃত্ব হ্রাস পেয়েছে এবং অফিসটি এখন মূলত ধর্মীয় বিষয়ে মনোনিবেশ করেছে। বিপরীতে, আধ্যাত্মিক কর্তৃত্বের পোপ দাবিগুলি সময়ের সাথে সাথে ক্রমবর্ধমানভাবে দৃঢ়ভাবে প্রকাশ করা হয়েছে, 1870 সালে পোপ প্রাক্তন ক্যাথেড্রার কথা বলার সময় বিরল অনুষ্ঠানের জন্য পোপ অযোগ্যতার মতবাদের ঘোষণার মাধ্যমে চূড়ান্ত হয় - আক্ষরিক অর্থে "চেয়ার থেকে (সেন্ট পিটার)"- বিশ্বাস বা নৈতিকতার একটি আনুষ্ঠানিক সংজ্ঞা জারি করা। 1.3 বিলিয়ন ক্যাথলিক এবং ক্যাথলিক বিশ্বাসের বাইরে থাকা উভয়ের উপর তার অবস্থানের ব্যাপক কূটনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক প্রভাবের কারণে পোপকে বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী ব্যক্তি হিসাবে বিবেচনা করা হয়,[14][15][16] এবং কারণ তিনি প্রধান। শিক্ষা ও স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী বিশ্বের বৃহত্তম বেসরকারি সংস্থা। ক্যথলিক শাখার প্রধান ধর্ম গুরু। পাদটীকা বহিঃসংযোগ Pope Endurance League - Sortable list of Popes Data Base of more than 23,000 documents of the Popes in latin and modern languages The Holy See - The Holy Father—website for the past and present Holy Fathers (since Pope Leo XIII) Origins of Peter as Pope The Authority of the Pope: Part I The Authority of the Pope: Part II রাষ্ট্রপ্রধান ক্যাথলিক ধর্মীয় উপাধি ধর্ম ও রাজনীতি
https://en.wikipedia.org/wiki/Pope
Pope
The pope (Latin: papa, from Ancient Greek: πάππας, romanized: páppas, lit. 'father') is the bishop of Rome and the visible head of the worldwide Catholic Church. He is also known as the supreme pontiff, Roman pontiff or sovereign pontiff. Since the eighth century, the pope is the head of state or sovereign of the Papal States and later the much smaller Vatican City State. The current pope is Francis, who was elected on 13 March 2013. From a Catholic viewpoint, the primacy of the bishop of Rome is largely derived from his role as the apostolic successor to Saint Peter, to whom primacy was conferred by Jesus, who gave Peter the Keys of Heaven and the powers of "binding and loosing", naming him as the "rock" upon which the Church would be built. While his office is called the papacy, the jurisdiction of the episcopal see is called the Holy See. It is the Holy See that is the sovereign entity under international law headquartered in the distinctively independent Vatican City State, a city-state which forms a geographical enclave within the conurbation of Rome, established by the Lateran Treaty in 1929 between Italy and the Holy See to ensure its temporal and spiritual independence. The Holy See is recognized by its adherence at various levels to international organizations and by means of its diplomatic relations and political accords with many independent states. According to Catholic tradition, the apostolic see of Rome was founded by Saint Peter and Saint Paul in the first century. The papacy is one of the most enduring institutions in the world and has had a prominent part in human history. In ancient times, the popes helped spread Christianity and intervened to find resolutions in various doctrinal disputes. In the Middle Ages, they played a role of secular importance in Western Europe, often acting as arbitrators between Christian monarchs. In addition to the expansion of Christian faith and doctrine, modern popes are involved in ecumenism and interfaith dialogue, charitable work, and the defence of human rights. Over time, the papacy accrued broad secular and political influence, eventually rivalling those of territorial rulers. In recent centuries, the temporal authority of the papacy has declined and the office is now largely focused on religious matters. By contrast, papal claims of spiritual authority have been increasingly firmly expressed over time, culminating in 1870 with the proclamation of the dogma of papal infallibility for rare occasions when the pope speaks ex cathedra—literally 'from the chair (of Saint Peter)'—to issue a formal definition of faith or morals. The pope is considered one of the world's most powerful people due to the extensive diplomatic, cultural, and spiritual influence of his position on both 1.3 billion Catholics and those outside the Catholic faith, and because he heads the world's largest non-government provider of education and health care, with a vast network of charities.
1331
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A6%B0%E0%A7%87%E0%A6%AC
জাগরেব
জাগরেব () দক্ষিণ-পূর্ব ইউরোপের রাষ্ট্র ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী নগরী। এটি ক্রোয়েশিয়ার বৃহত্তম নগরী ও দেশটির সংস্কৃতির কেন্দ্রবিন্দু। এটি ক্রোয়েশিয়ার উত্তর-পশ্চিম ভাগে, মেদভেদনিকা পর্বতমালার দক্ষিণ ঢালে, সমুদ্রতল থেকে আনুমানিক ১২২ মিটার উচ্চতায়, সাভা নদীর বন্যাপ্লাবিত অববাহিকা অঞ্চলে অবস্থিত। পর্বতগুলির উত্তরে জাগোরিয়ে নামক অরণ্য, আঙুরের ক্ষেত, গ্রাম ও প্রাচীন দুর্গবিশিষ্ট অঞ্চলটি অবস্থিত। জাগরেব নগরীটির জলবায়ু গ্রীষ্মকালে তপ্ত ও শীতকালে শীতল প্রকৃতির। ২০১৮ সালে মূল নগরীটির প্রাক্কলিত জনসংখ্যা ছিল ৮ লক্ষের সামান্য বেশি। বৃহত্তর জাগরেব পৌরপিণ্ড এলাকার জনসংখ্যা ১০ লক্ষ ৮৬ হাজারের কিছু বেশি, যা ক্রোয়েশিয়ার সমগ্র জনসংখ্যার আনুমানিক এক-চতুর্থাংশ। জাগরেব ক্রোয়েশিয়ার শিল্প ও বাণিজ্যের প্রধান কেন্দ্র। এখানকার শিল্পকারখানাগুলিতে ভারী যন্ত্রপাতি, বৈদ্যুতিক, ধাতব ও রাসায়নিক দ্রব্যাদি, প্রক্রিয়াজাত খাদ্যদ্রব্য, কাগজের দ্রব্য, জুতা ও চামড়াজাত দ্রব্য, বস্ত্র ও পোশাক প্রস্তুত করা হয়। নগরীটি পশ্চিম ও কেন্দ্রীয় ইউরোপ থেকে আড্রিয়াটিক সাগর ও বলকান উপদ্বীপ অঞ্চলে গমনকারী মহাসড়ক ও রেলপথগুলির একটি সংযোগস্থলে দাঁড়িয়ে আছে। এখানে প্রতি বছর একটি বাণিজ্যমেলার আয়োজন করা হয়। জাগরেব আধুনিক ক্রোয়েশিয়ার সংস্কৃতির হৃৎকেন্দ্র। এখানে ক্রোয়েশিয়ার বিজ্ঞান ও শিল্পকলা অ্যাকাডেমি (প্রাক্তন যুগোস্লাভ বিজ্ঞান ও শিল্পকলা অ্যাকাডেমি) এবং ১৬৬৯ সালে প্রতিষ্ঠিত জাগরেব বিশ্ববিদ্যালয়টি অবস্থিত। এছাড়া এখানে একাধিক শিল্পকলা প্রদর্শনীকেন্দ্র, গীতিনাট্যশালা, ইতিহাস ও বিজ্ঞান জাদুঘর, এবং শিল্পকলা, নাট্য ও সঙ্গীত অ্যাকাডেমি অবস্থিত। বহুকাল ধরে বিদেশী শাসনের অধীনে থাকা সত্ত্বেও জাগরেবের ঐতিহাসিক স্থাপত্য আজও অটুট। এখানে এখনও বহু মধ্যযুগীয় ভবন, ১৮শ শতকে নির্মিত একটি প্রাসাদ ও ১১শ শতকে নির্মিত ঐতিহাসিক একটি মহাগির্জা দাঁড়িয়ে আছে। গোথিক শৈলীতে নির্মিত সাধু মার্কের মহাগির্জা বা ক্যাথেড্রাল, ১৫শ শতকে নির্মিত ও সৌষ্ঠব ভঙ্গিতে উদীয়মান গির্জাশিখর সংবলিত সাধু স্টিভেনের মহাগির্জা এবং পুরাতন মহাশিল্পীদের অনেকগুলি চিত্রকর্ম সংবলিত স্ট্রসমায়ার চিত্রশালাটি উল্লেখ্য। নগরকেন্দ্র থেকে উত্তর দিকে পুরাতন গ্রাদেক ও কাপতোল শহরগুলির দিকে দুইটি প্রশস্ত সবুজ বেষ্টনী চলে গিয়েছে, এবং এগুলিতে বহুসংখ্যক জাদুঘর, চিত্রশালা ও প্রশস্ত চত্বর ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে। জাগরেব এখন যে এলাকায় অবস্থিত, সেখানে স্লাভীয় গোত্রের লোকেরা খ্রিস্টীয় ৬ষ্ঠ শতকে বসতি স্থাপন করেছিল। ১০৯৩ সালে একই এলাকায় একটি রোমান ক্যাথলিক ধর্মপ্রদেশের কেন্দ্র প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যাকে কেন্দ্র করে অপর একটি বসতি গড়ে ওঠে, যার নাম ছিল কাপ্তোল। মধ্যযুগে বহু শতাব্দী ধরে এই দুইটি নাগরিক ও ধর্মীয় বা যাজকীয় শহর সহাবস্থান করে ছিল এবং তারা ক্রোয়েশিয়ার রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র গঠন করেছিল। ১০ম শতকে নাগরিক শহরটিকে ক্রোয়েশিয়া রাজতন্ত্রের রাজধানী বানানো হয়। ১১শ শতকের শেষভাগে এসে এই শহর দুইটি হাঙ্গেরির নিয়ন্ত্রণে চলে যায়। ১২৪২ সালে নাগরিক শহরটি একটি হাঙ্গেরীয় মুক্ত রাজকীয় নগরীর মর্যাদা লাভ করে। এটি একটি স্বশাসিত সামন্ততান্ত্রিক লোকালয়ে পরিণত হয়। ১৩শ শতকে তুর্কিদের আক্রমণ থেকে প্রতিরক্ষার জন্য নাগরিক শহরটির চারপাশে প্রাচীর নির্মাণ করা হয় এবং এর নাম হয় গ্রাদেক, অর্থাৎ "দুর্গশহর"। ১৬শ শতকে ধর্মীয় কাপ্তোল শহরটিকেও দুর্গ দিয়ে প্রতিরক্ষা প্রদান করা হয়। ৩০০ বছর ধরে সম্প্রসারিত হতে হতে ১৯শ শতকে এসে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই লোকালয় শেষ পর্যন্ত একত্রিত হয় এবং নতুন নতুন ভবন নির্মাণ হয় ও দক্ষিণদিকে সাভা নদীর বন্যাপ্লাবিত সমভূমিতে এটি সম্প্রসারিত হতে শুরু করে। নতুন এই শহরে অনেক উন্মুক্ত চত্ত্বর ও নগর উদ্যান নির্মাণ করা হয়। ১৭শ শতক থেকেই অনানুষ্ঠিকভাবে এই পৌর অঞ্চলটিকে "জাগরেব" নামে ডাকা শুরু হয়। ১৮৫০ খ্রিস্টাব্দে এসে প্রশাসনিকভাবে গ্রাদেক ও কাপ্তোলকে একত্রিত করে "জাগরেব" (এবং জার্মান ভাষায় "আগ্রাম") নাম দেওয়া হয়। ১৮৬৭ সালে জাগরেব নগরীকে হাঙ্গেরির অধীনস্থ ক্রোয়েশিয়া ও স্লাভোনিয়া রাজ্যের রাজধানী বানানো হয়। ১৯শ শতকে ক্রোয়েশীয় জাতীয়তাবাদের পুনরুত্থানের সময় জাগরেব একই সাথে ক্রোয়েশিয়ার স্বাধীনতা আন্দোলন ও একটি সর্ব-যুগোস্লাভীয় আন্দোলনের কেন্দ্র ছিল। ২০শ শতকের শুরুতে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯১৮ সালে ক্রোয়েশিয়া অস্ট্রিয়া-হাঙ্গেরি সাম্রাজ্য থেকে মুক্ত হয়ে যায় এবং একীভূত সার্বীয়, ক্রোয়েশীয় ও স্লোভেনীয় রাজ্যের একটি অংশে পরিণত হয়, যা পরবর্তীতে ১৯২৯ সালে নাম বদলে যুগোস্লাভিয়া নামক দেশে পরিণত হয়। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জার্মানির শাসনাধীনে জাগরেব একটি অধীনস্থ ক্রোয়েশীয় রাজ্যের রাজধানীতে পরিণত হয়। ২য় বিশ্বযুদ্ধের সময় ১৯৪১ থেকে ১৯৪৫ সাল পর্যন্ত জাগরেব অক্ষশক্তির অধীনস্থ পুতুলরাষ্ট্র ক্রোয়েশিয়ার রাজধানী ছিল। ১৯৪৫ সালের মে মাসে মার্শাল টিটো নগরীটিকে জার্মানদের হাত থেকে মুক্ত করেন এবং ২য় বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯৪৫ সালে ক্রোয়েশীয় রাজ্যটি যুগোস্লাভীয় ক্রোয়েশিয়া প্রজাতন্ত্র হিসেবে পুনরায় যুগোস্লাভিয়াতে যোগ দেয়। ১৯৯১ সালে ক্রোয়েশিয়া স্বাধীনতা ঘোষণা করে যুগোস্লাভিয়া থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায় এবং জাগরেব এই নতুন রাষ্ট্রের রাজধানীতে পরিণত হয়। কিন্তু এর পর দেশটির বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে যে গৃহযুদ্ধ শুরু হয়, তাতে জাগরেব নগরীর ব্যাপক ক্ষতি হয়। ১৯৯৫ সালে যুদ্ধের পরিসমাপ্তি পরে নগরীটিকে আবার নতুন করে গড়ে তোলা হয়। ইতিহাস ক্রোয়েশিয়া সাম্রাজ্য (১৫২৭-১৯১৮) ক্রোয়েশিয়া সাম্রাজ্য-এ এই শহর ছিল রাজ্যের রাজধানী। ১৯৪১-বর্তমান নাৎজি জার্মানি সমর্থিত স্বাধীন ক্রোয়েশিয়া রাষ্ট্র-এ এই শহর ছিল রাজ্যের রাজধানী। পরবর্তীতে যুগোস্লাভিয়ার অন্তর্গত সমাজতান্ত্রিক ক্রোয়েশিয়ার কেন্দ্র হয় এই শহর । জলবায়ু জাগরেব এর জলবায়ু মহাসাগরীয় যা আর্দ্র মহাদেশীয় জলবায়ু অঞ্চলের সীমার কাছাকাছি। এখানে চারটি পৃথক ঋতু আছে। গ্রীষ্মকালে গরম হয়, এবং শীতকালে একটি আপাত শুষ্ক ঋতু ছাড়া ঠান্ডা। শীতকালীন গড় তাপমাত্রা -০.৫ ° সেলসিয়াস (৩১.১ ডিগ্রি ফারেনহাইট) এবং গ্রীষ্মে গড় তাপমাত্রা হল ২২ ° সে (৭১.৬ ডিগ্রি ফারেনহাইট)। তথ্যসূত্র ক্রোয়েশিয়ার শহর ইউরোপের রাজধানী
https://en.wikipedia.org/wiki/Zagreb
Zagreb
Zagreb ( ZAH-greb Croatian: [zǎːɡreb] ) is the capital and largest city of Croatia. It is in the north of the country, along the Sava river, at the southern slopes of the Medvednica mountain. Zagreb stands near the international border between Croatia and Slovenia at an elevation of approximately 158 m (518 ft) above sea level. At the 2021 census, the city itself had a population of 767,131, while the population of Zagreb urban agglomeration is slightly above one million people. Zagreb is a city with a rich history dating from Roman times. The oldest settlement in the vicinity of the city was the Roman Andautonia, in today's Šćitarjevo. The historical record of the name "Zagreb" dates from 1134, in reference to the foundation of the settlement at Kaptol in 1094. Zagreb became a free royal city in 1242. In 1851, Janko Kamauf became Zagreb's first mayor. Zagreb has special status as a Croatian administrative division—it comprises a consolidated city-county (but separate from Zagreb County), and is administratively subdivided into 17 city districts. Most of the city districts lie at a low elevation along the valley of the river Sava, but northern and northeastern city districts, such as Podsljeme and Sesvete districts are situated in the foothills of the Medvednica mountain, making the city's geographical image quite diverse. The city extends over 30 km (19 mi) east-west and around 20 km (12 mi) north-south. Zagreb ranks as a global city, with a 'Beta-' rating from the Globalization and World Cities Research Network. The transport connections, the concentration of industry, scientific, and research institutions and industrial tradition underlie its leading economic position in Croatia. Zagreb is the seat of the central government, administrative bodies, and almost all government ministries. Almost all of the largest Croatian companies, media, and scientific institutions have their headquarters in the city. Zagreb is the most important transport hub in Croatia: here Central Europe, the Mediterranean and Southeast Europe meet, making the Zagreb area the centre of the road, rail and air networks of Croatia. It is a city known for its diverse economy, high quality of living, museums, sporting, and entertainment events. Major branches of Zagreb's economy include high-tech industries and the service sector.
1332
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE
জাম্বিয়া
জাম্বিয়া দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। এর রাজধানীর নাম লুসাকা। দেশটির উত্তরে গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও তানজানিয়া, পূর্বে মালাউই, দক্ষিণ-পূর্বে মোজাম্বিক, দক্ষিণে জিম্বাবুয়ে, বতসোয়ানা ও নামিবিয়ার কাপ্রিভি, পশ্চিমে অ্যাঙ্গোলা। দেশটির আয়তন ৭৫২,৬১৪ বর্গকিমি। ইতিহাস রাজনীতি প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল অর্থনীতি জনসংখ্যা সংস্কৃতি আরও দেখুন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি Government of Zambia (State House) Parliament of Zambia (National Assembly) রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য Zambia from UCB Libraries GovPubs BBC News Western liberal eyes African investments In zambia Zambia web Banner display সম্প্রদায় ওয়েবসাইট Zambia Community Website Social networking, Community directory, Travel Information & Services Zambian Musicians (Zambian Music) মিডিয়া Zambia News Agency Zambia 24 (Zambian Blog) blog featuring latest news, posts & comments Zambia Online The Zambian Zambian Map Zambian Dancer পর্যটন Zambia Tourism Board (Extensive travel guide) Zambia Travel Guide Zambia Travel Information আফ্রিকার রাষ্ট্র কমনওয়েলথ প্রজাতন্ত্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ১৯৬৪-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল খ্রিস্টান রাষ্ট্র আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র স্থলবেষ্টিত দেশ স্বল্পোন্নত দেশ কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য ১৯৬৪-এ আফ্রিকায় প্রতিষ্ঠিত সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Zambia
Zambia
Zambia, officially the Republic of Zambia, is a landlocked country at the crossroads of Central, Southern and East Africa. It is typically referred to being in South-Central Africa or Southern Africa. It is bordered to the north by the Democratic Republic of the Congo, Tanzania to the north-east, Malawi to the east, Mozambique to the southeast, Zimbabwe and Botswana to the south, Namibia to the southwest, and Angola to the west. The capital city of Zambia is Lusaka, located in the south-central part of Zambia. The population is concentrated mainly around Lusaka in the south and the Copperbelt Province to the north, the core economic hubs of the country. Originally inhabited by Khoisan peoples, the region was affected by the Bantu expansion of the thirteenth century. Following European explorers in the 18th century, the British colonised the region into the British protectorates of Barotziland–North-Western Rhodesia and North-Eastern Rhodesia towards the end of the 19th century. These were merged in 1911 to form Northern Rhodesia. For most of the colonial period, Zambia was governed by an administration appointed from London with the advice of the British South Africa Company. On 24 October 1964, Zambia became independent of the United Kingdom and prime minister Kenneth Kaunda became the inaugural president. Kaunda's socialist United National Independence Party (UNIP) maintained power from 1964 until 1991. Kaunda played a key role in regional diplomacy, cooperating closely with the United States in search of solutions to conflicts in Southern Rhodesia (Zimbabwe), Angola, and Namibia. From 1972 to 1991, Zambia was a one-party state with UNIP as the sole legal political party under the motto "One Zambia, One Nation" coined by Kaunda. Kaunda was succeeded by Frederick Chiluba of the social-democratic Movement for Multi-Party Democracy in 1991, beginning a period of socio-economic development and government decentralisation. Zambia has since become a multi-party state and has experienced several peaceful transitions of power. Zambia contains abundant natural resources, including minerals, wildlife, forestry, freshwater, and arable land. In 2010, the World Bank named Zambia among the top 10 reformers in the World Bank's Ease of doing business index. As of the latest estimate in 2018, 47.9 percent of the population is affected by multidimensional poverty. The Common Market for Eastern and Southern Africa (COMESA) is headquartered in Lusaka.
1334
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%B8
জিউস
গ্রিক পুরাণে জিউস ( বা ; প্রাচীন গ্রিক: Ζεύς জ়্‌দেউ্যস্‌, আধুনিক গ্রিক: Δίας, Dias) হলেন "দেবগণ ও মানবজাতির পিতা"। হেসিয়ডের থিওজেনি অনুসারে, তিনি পরিবারের পিতার ন্যায় মাউন্ট অলিম্পাসের অলিম্পিয়ানদের শাসন করতেন। গ্রিক পুরাণে তিনি ছিলেন আকাশ ও বজ্রের দেবতা। গ্রিকদের বিশ্বাসে তিনি দেবরাজ। জিউস নিরন্তর বিশ্বব্রহ্মাণ্ডকে পর্যবেক্ষণ করেন। পসেনিয়াস লিখেছেন, "জিউস স্বর্গের রাজা, এই প্রবাদটি সকলেই জানেন।" হেসিয়ডের থিওজেনি গ্রন্থের মতে, জিউস বিভিন্ন দেবতাদের মধ্যে তাঁদের দায়িত্ব বণ্টন করে দেন। হোমারীয় স্তোত্রাবলি-তেও তাঁকে দেবতাদের প্রধান বলা হয়েছে। হেসিয়ডের থিওজেনি গ্রন্থে তাঁকে "দেবগণ ও মানবজাতির পিতা" বলেও অভিহিত করা হয়েছে। তার প্রতীকগুলি হল বজ্র, ঈগল, ষাঁড় ও ওক। ইন্দো-ইউরোপীয় ঐতিহ্যের এই সকল নিদর্শনগুলি ছাড়াও, এই ধ্রুপদি "মেঘ-সমাবেশকারী" প্রাচীন নিকট প্রাচ্য থেকেও কিছু মূর্তিতাত্ত্বিক বৈশিষ্ট্য অর্জন করেছেন। এর উদাহরণ হল রাজদণ্ড। গ্রিক শিল্পীরা মূলত দুটি ভঙ্গিতে জিউসের মূর্তিগুলি নির্মাণ করেছেন: প্রথমত, দণ্ডায়মান অবস্থায় দ্রুত-অগ্রসর হওয়ার ভঙ্গিতে, যেখানে তিনি ডান হাতে বজ্র উঁচিয়ে থাকেন এবং দ্বিতীয়ত রাজসভায় উপবিষ্ট মূর্তিতে। রোমান ও এট্রুস্ক্যান পুরাণে জিউসের সমতুল দেবতারা হলেন যথাক্রমে জুপিটার ও টিনিয়া। জিউস ক্রোনাস ও রেয়ার কনিষ্ঠ সন্তান। সর্বাধিক প্রচলিত মত অনুযায়ী, তিনি হেরাকে বিবাহ করেছিলেন। তবে ডোডোনার ওর‌্যাকল মতে, তার স্ত্রী ছিলেন ডায়োনে: ইলিয়ড মহাকাব্যের বর্ণনা অনুযায়ী, তার ঔরসে ডায়োনের গর্ভে আফ্রোদিতির জন্ম হয়। জিউস তার কামলালসার জন্য প্রসিদ্ধ। এর ফলস্রুতিতে তার অনেক দেবতা ও যোদ্ধা সন্তানের জন্ম হয়। এঁরা হলেন অ্যাথেনা, অ্যাপোলো ও আর্টেমিস, হার্মিস, পার্সেফোনি (ডিমিটারের গর্ভে), ডায়োনিসাস, পার্সেউস, হেরাক্লেস, হেলেন, মিনোস ও মিউজগণ (নিমোসিনের গর্ভে); জিউসের ঔরসে হেরার গর্ভে জন্ম হয় আরেস, হেবে ও হেফাস্টাসের। পৌরাণিক উপাখ্যান জন্ম ক্রোনাসের ঔরসে রিয়ার গর্ভে একাধিক সন্তানের জন্ম হয়: হেস্টিয়া, ডিমিটার, হেরা, হেডিস ও পোসেইদন। কিন্তু জন্মমাত্রেই ক্রোনাস তার সন্তানদের গিলে ফেলতেন। কারণ গাইয়া ও ইউরেনাসের থেকে তিনি জেনেছিলেন যে তিনি যেমন নিজের পিতাকে ক্ষমতাচ্যুত করেছিলেন, তেমনই তার নিজের সন্তানও তাঁকে ক্ষমতাচ্যুত করবে। জিউসের জন্মের পূর্বে রিয়া তাঁকে রক্ষা করার জন্য গাইয়ার সঙ্গে পরামর্শ চান, যাতে ইউরেনাস ও তার সন্তানদের প্রতি কৃত অপরাধের উপযুক্ত শাস্তি পান ক্রোনাস। রিয়া ক্রিটে জিউসের জন্ম দেন এবং শিশুর কাপড়ে জড়িয়ে একটি পাথর ক্রোনাসের হাতে তুলে দেন। এই পাথরটিই গিলে ফেলেন ক্রোনাস। শৈশব রিয়া জিউসকে ক্রিটের মাউন্ট ইডার একটি গুহায় লুকিয়ে রাখেন। তার শৈশব সম্পর্কে একাধিক পরস্পরবিরোধী কাহিনি প্রচলিত আছে: ১: গাইয়া তাঁকে লালনপালন করেন। ২: অ্যামালথিয়া নামে একটি ছাগল তাঁকে প্রতিপালন করেন। অন্যদিকে একদল সেনা বা ছোটো দেবতা নাচগান, চেঁচামেচি ও বর্শানিক্ষেপে শব্দ সৃষ্টি করেন, যাতে শিশুর কান্না ক্রোনাস না শুনতে পায়। ৩: অ্যাডাম্যান্থিয়া নামে এক নিম্ফ তাঁকে প্রতিপালন করেন। ক্রোনাস যেহেতু পৃথিবী, স্বর্গ ও সমুদ্রের দেবতা ছিলেন, তাই তার কাছ থেকে লুকোতে গিয়ে সেই নিম্ফ একটি দড়ির দোলনায় জিউসকে গাছে ঝুলিয়ে রাখেন, যাতে সে পৃথিবী, সমুদ্র ও আকাশের বাইরে থেকে তার পিতার দৃষ্টির অগোচরে থাকেন। ৪: সিনোসুরা নামে এক নিম্ফ তাঁকে প্রতিপালন করেন। কৃতজ্ঞতাবশত জিউস নক্ষত্রমণ্ডলীতে তাঁকে স্থান দেন। ৫: মেলিসা তাঁকে প্রতিপালন করেন। তিনি জিউসকে ছাগলের দুধ ও মধু খাওয়াতেন। ৬: একটি পশুপালক পরিবার এই মর্মে তাঁকে প্রতিপালন করতে রাজি হয় যে, তাদের ভেড়ার পালে নেকড়েরা কখনও হানা দেবে না। দৈবরাজ্য লাভ বয়ঃপ্রাপ্তির পর জিউস ক্রোনাসকে সেই পাথরটি ওগরাতে বাধ্য করেন যেটি ওম্ফালোস নামক নশ্বর মানুষদের প্রতীক হিসেবে পাইথো পারনাসাসের উপত্যকায় রেখেছিল। তারপর গেলার বিপরীত ক্রমে ক্রোনাসকে তিনি তার ভাইবোনদের ওগরাতে বাধ্য করেন। কোনো কোনো পাঠান্তর থেকে জানা যায়, শিশুগুলিকে ওগরানোর জন্য মেটিস ক্রোনাসকে বমি করার ঔষধ প্রদান করেছিলেন। আবার কোনো কোনো মতে, জিউস ক্রোনাসের পেট চিরে তার ভাইবোনদের উদ্ধার করেছিলেন। এরপর টারটারাসের রক্ষক ক্যাম্পেকে হত্যা করে তিনি ক্রোনাসের ভাই জাইগ্যানেটস, হেক্টনকারস ও সাইক্লোপসদের উদ্ধার করেন। কৃতজ্ঞতাবশত, সাইক্লোপসরা তাঁকে বজ্র ও বিদ্যুৎ প্রদান করেন, যা পূর্বে গাইয়া কর্তৃক লুকিয়ে রাখা হয়েছিল। জিউস তার ভাইবোন, জাইগ্যানেটস, হেক্টনকারস ও সাইক্লোপসের সহায়তায় ক্রোনাস সহ অন্যান্য টাইটানদের ক্ষমতাচ্যুত করেন। এই ঘটনা টাইটানোমেশি বা টাইটানদের যুদ্ধ নামে পরিচিত। টাইটানদের পরাজিত করে তারা তাঁদের টারটারাস নামে অন্ধকার এক পাতাললোকে নিক্ষেপ করেন। অ্যাটলাস নামে এক টাইটানকে জিউসের বিরুদ্ধে যুদ্ধের শাস্তিস্বরূপ আকাশ ধরে রাখার কাজ দেওয়া হয়। টাইটানদের সঙ্গে যুদ্ধের পর জিউস তার দুই দাদা পসেইডন ও হেডিসের সঙ্গে বিশ্বচরাচর ভাগ করে নেন। জিউস হন আকাশের দেবতা, পসেইডন সমুদ্রের এবং হেডিস মৃতলোক বা পাতালের দেবতা হন। প্রাচীন পৃথিবী গাইয়াকে কেউ দাবি করতে পারেন না। তাই তিনি এই তিন জনেরই নিয়ন্ত্রণাধীন থাকেন। এই কারণেই পসেইডনকে "ভূকম্প-সৃষ্টিকারী" (ভূমিকম্পের দেবতা) বলা হয় এবং হেডিস মৃত মানুষদের উপর নিজ আধিপত্য কায়েম করেন। (পেনথাস দেখুন) টাইটানদের প্রতি জিউসের আচরণ গাইয়াকে ক্ষুব্ধ করে। কারণ টাইটানরা ছিল তার সন্তান। দৈবরাজ্য লাভের পরই জিউসকে তাই গাইয়ার অন্যান্য সন্তান অর্থাৎ টাইফোন ও একিদনা নামে দৈত্যদ্বয়ের সঙ্গে লড়াই করতে হয়। তিনি টাইফোনকে একটি পর্বতের তলায় বন্দী করেন। কিন্তু একিদনা ও তার সন্তানদের মুক্তি দেন। জিউস ও হেরা জিউস হেরার ভ্রাতা ও স্বামী। জিউসের ঔরসে হেরার গর্ভে আরেস, হেবে ও হেফাস্টাসের জন্ম হয়। যদিও কোনো কোনো মতে, হেরা একাকীই এই সকল সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন। অন্য মতে, ইলিথিয়া ও এরিসও হেরার কন্যা। নিম্ফ ও বিভিন্ন পৌরাণিক নশ্বর রাজবংশীয় নারী ও বালকদের সঙ্গে জিউসের যৌনসম্পর্ক ও প্রণয়কাহিনি প্রসিদ্ধ। অলিম্পিয়ান পুরাণতত্ত্বের মতে, লেটো, ডিমিটার, ডায়োনে ও মাইয়ার সঙ্গেও জিউসের যৌন সম্পর্ক বজায় ছিল। জিউসের প্রণয়ী নশ্বরেরা হলেন সেমেল, আইয়ো, ইউরোপা ও লেডা। (বিস্তারিত বর্ণনার জন্য নিচে দেখুন) একাধিক পুরাণে দেখানো হয়েছে হেরা তার স্বামীয় প্রণয়ীদের প্রতি ঈর্ষাকাতর। এই ঈর্ষাবশত তিনি জিউসের অন্যান্য প্রণয়ী ও তাঁদের সন্তানদের প্রতি শত্রুভাবাপন্ন। কিছু সময়ের জন্য ইকো নামে এক নিম্ফ অবিরাম কথা বলে হেরার মনোযোগ তার স্বামীর প্রণয়াভিযান থেকে সরিয়ে রাখেন। হেরা এই ছলটি ধরে ফেললে, ইকোকে অভিশাপ দেন যে সে শুধু অন্যের শব্দই প্রতিধ্বনিত করতে পারবে। প্রণয়সঙ্গী ও সন্তানাদি দৈব মাতৃকার গর্ভে নশ্বর/নিম্ফ/অন্যান্য মায়ের গর্ভে *The Greeks variously claimed that the Fates were the daughters of Zeus and the Titaness Themis or of primordial beings like Nyx, Chaos or Anake. † He is described as being "Earth-born" and was gestated buried beneath the ground; this is Gaia's domain, though she had no direct involvement in his birth or development. Other versions of his parentage include a version of the former excluding Poseidon and one with solely Poseidon and Euryale as his parents. পাদটীকা অতিরিক্ত পাঠ Burkert, Walter, (1977) 1985. Greek Religion, especially section III.ii.1 (Harvard University Press) Cook, Arthur Bernard, Zeus: A Study in Ancient Religion, (3 volume set), (1914–1925). New York, Bibilo & Tannen: 1964. Volume 1: Zeus, God of the Bright Sky, Biblo-Moser, June 1, 1964, (reprint) Volume 2: Zeus, God of the Dark Sky (Thunder and Lightning), Biblo-Moser, June 1, 1964, Volume 3: Zeus, God of the Dark Sky (earthquakes, clouds, wind, dew, rain, meteorites) Druon, Maurice, The Memoirs of Zeus, 1964, Charles Scribner's and Sons. (tr. Humphrey Hare) Farnell, Lewis Richard, Cults of the Greek States 5 vols. Oxford; Clarendon 1896–1909. Still the standard reference. Farnell, Lewis Richard, Greek Hero Cults and Ideas of Immortality, 1921. Graves, Robert; The Greek Myths, Penguin Books Ltd. (1960 edition) Mitford,William, The History of Greece, 1784. Cf. v.1, Chapter II, Religion of the Early Greeks Moore, Clifford H., The Religious Thought of the Greeks, 1916. Nilsson, Martin P., Greek Popular Religion, 1940. Nilsson, Martin P., History of Greek Religion, 1949. Rohde, Erwin, Psyche: The Cult of Souls and Belief in Immortality among the Greeks, 1925. Smith, William, Dictionary of Greek and Roman Biography and Mythology, 1870, Ancientlibrary.com , William Smith, Dictionary: "Zeus" Ancientlibrary.com বহিঃসংযোগ Greek Mythology Link, Zeus stories of Zeus in myth Theoi Project, Zeus summary, stories, classical art Theoi Project, Cult Of Zeus cult and statues Photo: Pagans Honor Zeus at Ancient Athens Temple from National Geographic ইলিয়ডের দেবতা গ্রিক দেবতা গ্রিক পুরাণ দ্বাদশ অলিম্পিয়ান পৌরাণিক রাজা রক্ষক দেবতা আকাশ ও আবহাওয়ার দেবতা বজ্রের দেবতা ওর‌্যাকুলার দেবতা দেবতাদের নাম গ্রিক পুরাণের চরিত্র গ্রিক পুরাণের রাজা সূর্য দেবতা
https://en.wikipedia.org/wiki/Zeus
Zeus
Zeus (, Ancient Greek: Ζεύς) is the sky and thunder god in ancient Greek religion and mythology, who rules as king of the gods on Mount Olympus. His name is cognate with the first syllable of his Roman equivalent Jupiter. Zeus is the child of Cronus and Rhea, the youngest of his siblings to be born, though sometimes reckoned the eldest as the others required disgorging from Cronus's stomach. In most traditions, he is married to Hera, by whom he is usually said to have fathered Ares, Eileithyia, Hebe, and Hephaestus. At the oracle of Dodona, his consort was said to be Dione, by whom the Iliad states that he fathered Aphrodite. According to the Theogony, Zeus' first wife was Metis, by whom he had Athena. Zeus was also infamous for his erotic escapades. These resulted in many divine and heroic offspring, including Apollo, Artemis, Hermes, Persephone, Dionysus, Perseus, Heracles, Helen of Troy, Minos, and the Muses. He was respected as a sky father who was chief of the gods and assigned roles to the others: "Even the gods who are not his natural children address him as Father, and all the gods rise in his presence." He was equated with many foreign weather gods, permitting Pausanias to observe "That Zeus is king in heaven is a saying common to all men". Zeus' symbols are the thunderbolt, eagle, bull, and oak. In addition to his Indo-European inheritance, the classical "cloud-gatherer" (Greek: Νεφεληγερέτα, Nephelēgereta) also derives certain iconographic traits from the cultures of the ancient Near East, such as the scepter.
1335
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BF%E0%A6%AE%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A7%87
জিম্বাবুয়ে
জিম্বাবুয়ে (ইংরেজি ভাষায়; Republic of Zimbabwe) দক্ষিণাঞ্চলীয় আফ্রিকার একটি স্থলবেষ্টিত রাষ্ট্র। দেশটি এর দক্ষিণ-পূর্ব অংশে অবস্থিত ১৪শ শতকে পাথরে নির্মিত মহান জিম্বাবুয়ে শহরের নামে নামকরণ করা হয়েছে। জাম্বেজি নদীর উপর অবস্থিত ভিক্টোরিয়া জলপ্রপাত এবং বন্য জীবজন্তুর জন্য দেশটি বিখ্যাত। জিম্বাবুয়ের জনগণকে দুইটি প্রধান জাতিগত ও ভাষাগত দলে ভাগ করা যায় --- ন্‌দেবেলে ও শোনা ভাষা। ন্‌দেবেলেরা প্রধানত দক্ষিণ-পশ্চিম অংশে বাস করে। জিম্বাবুয়ের রাজধানী হারারে। শহরটি একটি বাণিজ্যিক খামারপ্রধান জেলার কেন্দ্রে অবস্থিত। জিম্বাবুয়েতে ২০০০ বছর ধরে মানুষের বাস। বর্তমান জিম্বাবুয়ে এলাকাটি অতীতে একাধিক বৃহত্তর আফ্রিকান রাজত্বের কেন্দ্র ছিল, যাদের মধ্যে আছে মহান জিম্বাবুয়ে, মুতাপা ও রোজওয়ি সাম্রাজ্য। ১৮০০-এর দশক থেকে ১৯৬৫ পর্যন্ত জিম্বাবুয়ে ব্রিটিশ উপনিবেশ দক্ষিণ রোডেশিয়া নামে পরিচিত ছিল। ১৯৬৫ সালে এখানকার শ্বেতাঙ্গ অধিবাসীরা রোডেশিয়াকে আলাদা রাষ্ট্র হিসেবে ঘোষণা করলেও যুক্তরাজ্য এটিকে স্বীকৃতি দেয়নি। ১৯৮০ সালে দেশের সংখ্যাগুরু কৃষ্ণাঙ্গ জনগণ জিম্বাবুয়ে নামে দেশটিকে স্বাধীন করে। ইতিহাস রাজনীতি ১৯৬৫ থেকে ১৯৭৯ সাল পর্যন্ত স্বাধীন জিম্বাবুয়ের দাবীতে রোডেশিয়ান বুশ যুদ্ধ বা জিম্বাবুয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধ হয়। ১৯৮০ সালে ল্যাংকাস্টার হাউস এগ্রিমেন্টের মাধ্যমে দেশ স্বাধীন হয়। ১৯৮০ সালের পর থেকে ৩৭ বছর ধরে ক্ষমতাসীন রবার্ট মুগাবে। আশির দশকের শুরুতে যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীন হয় আফ্রিকার এ দেশটি। তখন থেকেই ক্ষমতায় আছেন রবার্ট মুগাবে। বেশ কয়েক বছর ধরে তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগ উঠছে। কিন্তু ক্ষমতা ছাড়তে নারাজ ছিলেন তিনি। ৬ নভেম্বর ২০১৭, ভাইস প্রেসিডেন্ট এমারসন নানগাগওয়াকে বরখাস্ত এবং ক্ষমতাসীন দল জিম্বাবুয়ে আফ্রিকান ন্যাশনাল ইউনিয়ন-প্যাট্রিওটিক ফ্রন্ট (জেডএএনইউ-পিএফ) থেকে বহিষ্কার করেন মুগাবে। এর ফলে সামরিক অভ্যুত্থানের পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়। জিম্বাবুয়ের নিয়ন্ত্রণ এখন দেশটির সেনাবাহিনীর হাতে। প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভৌগোলিক অঞ্চল অর্থনীতি জিম্বাবুয়ে পৃথিবীর তৃতীয় বৃহত্তম প্লাটিনাম উৎপাদক দেশ (দক্ষিণ আফ্রিকা ও রাশিয়ার পর) । জনসংখ্যা উপাত্ত ২০০৯ সাল পর্যন্ত লোকসংখ্যা ১২,৫২৩,০০০ জন । জিম্বাবুয়েতে খৃষ্টধর্মাবলম্বীরা সংখ্যাগরিষ্ট । সংস্কৃতি খেলাধুলা হারারে শহরে অবস্থিত ৬০,০০০ আসনবিশিষ্ট জিম্বাবুয়ে জাতীয় ক্রীড়া স্টেডিয়াম দেশের প্রধান স্টেডিয়াম। ফুটবল খেলার জন্য এই স্টেডিয়ামটি ব্যবহৃত হয়। হারারে শহরে হারারে স্পোর্টস ক্লাব এর নিজস্ব ক্রিকেট মাঠ রয়েছে , যেখানে আন্তর্জাতিক ম্যাচ অনুষ্ঠিত হয়। এছাড়া বুলাওয়ে শহরে কুইন্স স্পোর্টস ক্লাব এর নিজস্ব ক্রিকেট মাঠ আন্তর্জাতিক আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যবহৃত হয়। তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারি Parliament of Zimbabwe—official government site Zimbabwe Government Online—official government site and mirror site রাষ্ট্র প্রধান এবং মন্ত্রিপরিষদ সদসবৃন্দ সাধারণ তথ্য The OneWorld Guide to Zimbabwe In-Depth: Zimbabwe’s humanitarian crisis - IRIN Country Profile from BBC News Zimbabwe from UCB Libraries GovPubs সংবাদ The Zimbabwean The Zimbabwe Guardian Zimbabwe Humanitarian news and analysis from IRIN Zimbabwe Metro পর্যটন, পরিবেশ, এবং সংস্কৃতি ZimConservation —News and opinions about the wildlife and environment of Zimbabwe Zimbabwe Urban Culture—Site Promoting Modern Zimbabwe Youth arts আফ্রিকার রাষ্ট্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র জি১৫ রাষ্ট্র ১৯৮০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল সামরিক একনায়কতন্ত্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল স্থলবেষ্টিত দেশ প্রজাতন্ত্র পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র দক্ষিণ-পূর্ব আফ্রিকার রাষ্ট্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Zimbabwe
Zimbabwe
Zimbabwe ( ; Shona pronunciation: [zi.ᵐba.ɓwe]), officially the Republic of Zimbabwe, is a landlocked country in Southeast Africa, between the Zambezi and Limpopo Rivers, bordered by South Africa to the south, Botswana to the southwest, Zambia to the north, and Mozambique to the east. The capital and largest city is Harare, and the second largest is Bulawayo. A country of roughly 15 million people as per 2022 census, Zimbabwe's largest ethnic group are the Shona, who make up 80% of the population, followed by the Northern Ndebele and other smaller minorities. Zimbabwe has 16 official languages, with English, Shona, and Ndebele the most common. Zimbabwe is a member of the United Nations, the Southern African Development Community, the African Union, and the Common Market for Eastern and Southern Africa. Beginning in the 9th century, during its late Iron Age, the Bantu people (who would become the ethnic Shona) built the city-state of Great Zimbabwe; the city-state became one of the major African trade centres by the 11th century but was abandoned by the mid 15th century. From there, the Kingdom of Zimbabwe was established, followed by the Rozvi and Mutapa empires. The British South Africa Company of Cecil Rhodes demarcated the Rhodesia region in 1890 when they conquered Mashonaland and later in 1893 Matabeleland after the First Matabele War. Company rule ended in 1923 with the establishment of Southern Rhodesia as a self-governing British colony. In 1965, the white minority government unilaterally declared independence as Rhodesia. The state endured international isolation and a 15-year guerrilla war with black nationalist forces; this culminated in a peace agreement that established de jure sovereignty as Zimbabwe in April 1980. Robert Mugabe became Prime Minister of Zimbabwe in 1980, when his ZANU–PF party won the general election following the end of white minority rule and has remained the country's dominant party since. He was the President of Zimbabwe from 1987, after converting the country's initial parliamentary system into a presidential one, until his resignation in 2017. Under Mugabe's authoritarian regime, the state security apparatus dominated the country and was responsible for widespread human rights violations. From 1997 to 2008 the economy experienced consistent decline (and in the latter years, hyperinflation), though it has since seen rapid growth after the use of currencies other than the Zimbabwean dollar was permitted. In 2017, in the wake of over a year of protests against his government as well as Zimbabwe's rapidly declining economy, a coup d'état resulted in Mugabe's resignation. Emmerson Mnangagwa has since served as Zimbabwe's president.
1336
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AA%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%A3%E0%A6%BF%E0%A6%AC%E0%A6%BF%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%9E%E0%A6%BE%E0%A6%A8
প্রাণিবিজ্ঞান
প্রাণিবিদ্যা নামক জীববিজ্ঞানের শাখায় মানুষ সহ অন্য সব প্রাণীদের নিয়ে গবেষণা করা হয়। জীববিদ্যা বা জীববিজ্ঞানের যে শাখায় প্রাণীর বিষয়ে সম্যক আলোচনা ও বিভিন্ন তথ্য পরিবেশিত হয় তাকে প্রাণিবিজ্ঞান বা প্রাণিবিদ্যা বলে। প্রাণিবিদ্যা বা জীববিজ্ঞান জীববিজ্ঞানের শাখা যা প্রাণীদের শরীরে অধ্যয়নরত গঠন ভ্রূণবিজ্ঞান বিবর্তন শ্রেণিবিন্যাসের অভ্যাস এবং জীববন্ত এবং বিলুপ্ত উভয় প্রাণীর বণ্টন এবং কীভাবে তারা তাদের বাস্তুতন্ত্রের সাথে মিথস্ক্রিয়া করে। শব্দটি প্রাচীন, গ্রিক অভিধান থেকে উদ্ভূত হয়েছে ζῷον, zōion, ইত্যাদি। প্রাণী এবং λόγος, logos, ইত্যাদি। "জ্ঞান অধ্যয়ন" এর ক্ষেত্রে প্রানীবিজ্ঞান-এর ভূমিকা অনস্বীকার্য। ইতিহাস প্রাণিবিদ্যা ইতিহাস প্রাচীন থেকে আধুনিক সময়ে পশু রাজত্বের গবেষণা ট্রেস। যদিও একক সুষম ক্ষেত্র হিসাবে প্রাণিবিদ্যা সম্পর্কে ধারণাটি উদ্ভূত হয়েছিল, তবে প্রাচীন গ্রিক রোমান জগতে অ্যারিস্টটল ও গ্যালেনের জৈবিক কাজগুলিতে ফিরে আসার ফলে প্রাকৃতিক ইতিহাস থেকে উদ্ভাবিত প্রাণিকবিদ্যাগুলি উদ্ভূত হয়েছিল। এই প্রাচীন কাজটি মুসলিম চিকিংসকদের মধ্য থেকে মধ্যযুগ এবং আলবার্টস ম্যাগনাসের মতো পণ্ডিতদের দ্বারা আরও উন্নত করা হয়েছিল। নবজাগরণের সময় এবং আধুনিক যুগে প্রাণবৈচিত্র্যের একটি নূতন আগ্রহ এবং অনেক উপন্যাসের আবিষ্কারের মাধ্যমে ইউরোপে ভূতাত্ত্বিক চিন্তাধারার বিপ্লব ঘটে। এই আন্দোলনের মধ্যে উল্লেখযোগ্য ছিলেন ভেসালিয়াস ও উইলিয়াম হার্ভি। তিনি কার্ল লিনাইয়াস ও বফনের মতো শারীরবৃত্তীয় ও প্রকৃতিবিদদের গবেষণামূলক পর্যবেক্ষণ এবং জীবনধারা এবং জীবাশ্ম রেকর্ডের পাশাপাশি জীবের উন্নয়ন ও আচরণের শ্রেণিবিন্যাস শুরু করেছিলেন। মাইক্রোস্কোপি সূর্যালোকের পূর্বে অজানা বিশ্বের কোষ তত্ত্বের ভিত্তি স্থাপন করেছে। প্রাকৃতিক ধর্মতত্ত্বের ক্রমবর্ধমান গুরুত্ব আংশিকভাবে যান্ত্রিক দর্শনের উত্থানের প্রতিক্রিয়া প্রাকৃতিক ইতিহাসের বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করে (যদিও এটি নকশা থেকে যুক্তিতে প্রবেশ করে)। ১৮ তম ও ঊনবিংশ শতাব্দী জুড়ে জীববিজ্ঞান একটি ক্রমবর্ধমান পেশাদারী বৈজ্ঞানিক শৃঙ্খলা হয়ে ওঠে। এক্সপ্লোরার প্রকৃতিবিদ যেমন আলেকজান্ডার ভন হুম্বল্ট্ট্ জীবজগৎ এবং তাদের পরিবেশের মধ্যে পারস্পরিক মিথষ্ক্রিয়া পরীক্ষা করে এবং এই সম্পর্কগুলি ভূগোলের উপর ভিত্তি করে জীবজগতে ইকোলজি এবং এথোলজির ভিত্তি স্থাপন করে। প্রকৃতিবাদীরা মূলত প্রত্যাখ্যান শুরু করে এবং বিলুপ্তির এবং প্রজাতির পরিবর্তনের গুরুত্ব বিবেচনা করে। সেল তত্ত্ব জীবনের মৌলিক ভিত্তি একটি নতুন দৃষ্টিকোণ প্রদান। গবেষণা প্রাণিবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা বিশুদ্ধ প্রাণিবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা: অঙ্গসংস্থান শারীরস্থান শারীরবিদ্যা কোষবিদ্যা কলাস্থানবিদ্যা ভ্রূণবিদ্যা বংশগতিবিদ্যা বাস্তব্যবিদ্যা / বাস্তুবিদ্যা শ্রেণিবিন্যাসবিদ্যা ফলিত প্রাণিবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা: মৎস্য চাষ মৌমাছি পালন রেশম চাষ চিংড়ি চাষ বিশেষিত প্রাণিবিজ্ঞানের বিভিন্ন শাখা: ফিতাকৃমিবিদ্যা সুতাকৃমিবিদ্যা পতঙ্গবিদ্যা মাৎস্যবিদ্যা পাখিবিদ্যা স্তন্যপায়ীবিদ্যা আরও দেখুন অ্যানিম্যাল সাইন্স, গৃহপালিত পশুদের বিজ্ঞান অ্যাস্ট্রোবায়োলজি প্রাণিবিজ্ঞানীদের তালিকা প্রানিবিজ্ঞানের সূচি প্রানিবিজ্ঞানের সময়রেখা প্রানিবিজ্ঞানের বিভাজন তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ Books on Zoology at Project Gutenberg Online Dictionary of Invertebrate Zoology জীববিজ্ঞান প্রাণিবিজ্ঞান মূল বিষয়ের নিবন্ধ জীববিজ্ঞানের শাখা
https://en.wikipedia.org/wiki/Zoology
Zoology
Zoology (UK: zoo-OL-ə-jee, US: zoh-OL-ə-jee) is the scientific study of animals. Its studies include the structure, embryology, classification, habits, and distribution of all animals, both living and extinct, and how they interact with their ecosystems. Zoology is one of the primary branches of biology. The term is derived from Ancient Greek ζῷον, zōion ('animal'), and λόγος, logos ('knowledge', 'study'). Although humans have always been interested in the natural history of the animals they saw around them, and used this knowledge to domesticate certain species, the formal study of zoology can be said to have originated with Aristotle. He viewed animals as living organisms, studied their structure and development, and considered their adaptations to their surroundings and the function of their parts. Modern zoology has its origins during the Renaissance and early modern period, with Carl Linnaeus, Antonie van Leeuwenhoek, Robert Hooke, Charles Darwin, Gregor Mendel and many others. The study of animals has largely moved on to deal with form and function, adaptations, relationships between groups, behaviour and ecology. Zoology has increasingly been subdivided into disciplines such as classification, physiology, biochemistry and evolution. With the discovery of the structure of DNA by Francis Crick and James Watson in 1953, the realm of molecular biology opened up, leading to advances in cell biology, developmental biology and molecular genetics.
1337
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9B%E0%A6%BE%E0%A6%A4%E0%A6%BE%20%28%E0%A6%9B%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%BE%E0%A6%95%29
ছাতা (ছত্রাক)
ছাতা একপ্রকার নিম্ন শ্রেণীর ছত্রাক। এগুলো সাধারণত আর্দ্র স্থানে জন্মায়, যেমন রুটি,দই বা দধি, অনেক দিনের পুরানো জুতা, ভেজা কাপড় ইত্যাদি। শ্রেণীবিন্যাস আবাস স্থল খাদ্য কোষীয় গঠন জীবন চক্র ব্যবহারিক প্রয়োগ আরোও দেখুন মাইকোরাইজা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ The EPA's guide to mold ছত্রাক জীব
https://en.wikipedia.org/wiki/Mold
Mold
A mold (US, PH) or mould (UK, CW) is one of the structures that certain fungi can form. The dust-like, colored appearance of molds is due to the formation of spores containing fungal secondary metabolites. The spores are the dispersal units of the fungi. Not all fungi form molds. Some fungi form mushrooms; others grow as single cells and are called microfungi (for example yeasts). A large and taxonomically diverse number of fungal species form molds. The growth of hyphae results in discoloration and a fuzzy appearance, especially on food. The network of these tubular branching hyphae, called a mycelium, is considered a single organism. The hyphae are generally transparent, so the mycelium appears like very fine, fluffy white threads over the surface. Cross-walls (septa) may delimit connected compartments along the hyphae, each containing one or multiple, genetically identical nuclei. The dusty texture of many molds is caused by profuse production of asexual spores (conidia) formed by differentiation at the ends of hyphae. The mode of formation and shape of these spores is traditionally used to classify molds. Many of these spores are colored, making the fungus much more obvious to the human eye at this stage in its life-cycle. Molds are considered to be microbes and do not form a specific taxonomic or phylogenetic grouping, but can be found in the divisions Zygomycota and Ascomycota. In the past, most molds were classified within the Deuteromycota. Mold had been used as a common name for now non-fungal groups such as water molds or slime molds that were once considered fungi. Molds cause biodegradation of natural materials, which can be unwanted when it becomes food spoilage or damage to property. They also play important roles in biotechnology and food science in the production of various pigments, foods, beverages, antibiotics, pharmaceuticals and enzymes. Some diseases of animals and humans can be caused by certain molds: disease may result from allergic sensitivity to mold spores, from growth of pathogenic molds within the body, or from the effects of ingested or inhaled toxic compounds (mycotoxins) produced by molds.
1341
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%B9%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%89%E0%A6%A1
হলিউড
হলিউড ক্যালিফোর্নিয়া অঙ্গরাজ্যের লস এঞ্জেলেস শহরের একটি এলাকা। এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র জগতের প্রাণকেন্দ্র। ইতিহাস ১৮৫৩ সাল থেকে এখানে মানববসতির স্থান পাওয়া যায়। ১৮৭০ সাল থেকে এই এলাকায় কৃষিজমি তৈরির কারণে জনসমাগম বাড়তে থাকে। তথ্যসূত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঞ্চল হলিউড ক্যালিফোর্নিয়ার সংস্কৃতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের চলচ্চিত্র মাধ্যম
https://en.wikipedia.org/wiki/Hollywood,_Los_Angeles
Hollywood, Los Angeles
Hollywood is a neighborhood in the central region of Los Angeles County, California, mostly within the city of Los Angeles. Its name has come to be a shorthand reference for the U.S. film industry and the people associated with it. Many notable film studios, such as Sony Pictures, Walt Disney Studios, Paramount Pictures, Warner Bros. and Universal Pictures, are located near or in Hollywood. Hollywood was incorporated as a municipality in 1903. The northern and eastern parts of the neighborhood were consolidated with the City of Los Angeles in 1910. Soon thereafter a prominent film industry emerged, having developed first on the East Coast. Eventually it became the most recognizable in the world.
1342
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%87%E0%A6%B9%E0%A7%81%E0%A6%A6%E0%A6%BF%20%E0%A6%97%E0%A6%A3%E0%A6%B9%E0%A6%A4%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE
ইহুদি গণহত্যা
ইউরোপে ইহুদি গণহত্যা ( দ্য হলোকস্ট্‌; হাশোয়া) হলো দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় ইহুদি ধর্মাবলম্বীদের উপর চালানো গণহত্যা। হিটলারের নেতৃত্বে নাৎসি পার্টির পরিচালনায় জার্মান নাৎসি সামরিক বাহিনী ইউরোপের তদানীন্তন ইহুদি জনগোষ্ঠীর অর্ধেকের বেশি অংশকে এবং আরও কিছু সংখ্যালঘু জনগোষ্ঠীকে বন্দী শিবির ও শ্রম শিবিরে নির্বিচারে হত্যা করে। আনুমানিক ষাট লক্ষ ইহুদি এবং আরও অনেক সংখ্যালঘু জাতিগোষ্ঠীর মানুষ প্রাণ দেয়। হিটলারের বাহিনী পঞ্চাশ লক্ষ ইহুদি ছাড়াও সোভিয়েত যুদ্ধবন্দী, সাম্যবাদী, রোমানী ভাষাগোষ্ঠীর (যাযাবর) জনগণ, অন্যান্য স্লাভীয় ভাষাভাষী জনগণ, প্রতিবন্ধী, সমকামী পুরুষ এবং ভিন্ন রাজনৈতিক ও ধর্মীয় মতাদর্শের মানুষদের ওপর এই অমানবিক গণহত্যা পরিচালনা করে। নাৎসিরা এর নাম দিয়েছিল "ইহুদি প্রশ্নের চরম উপসংহার"। নাৎসি অত্যাচারের সকল ঘটনা আমলে নিলে সর্বমোট নিহতের সংখ্যা দাঁড়াতে পারে নব্বই লক্ষ থেকে এক কোটি দশ লক্ষের মত। অত্যাচার ও গণহত্যার এসব ঘটনা বিভিন্ন পর্যায়ে সংঘটিত হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরুর অনেক আগেই নাগরিক সমাজ থেকে ইহুদিদের উৎখাতের জন্য জার্মানিতে আইন প্রণয়ন করা হয়। জনাকীর্ণ বন্দী শিবিরে রাজনৈতিক ও যুদ্ধবন্দীদেরকে ক্রীতদাসের মতো কাজে লাগাতো যারা পরে অবসন্ন হয়ে রোগভোগের পর মারা যেত। জার্মানিতে নাৎসিদের উত্থানকে তৃতীয় রাইখ ("তৃতীয় রাজ্য") বলা হয়। নাৎসি জার্মানি তখন পূর্ব ইউরোপের কিছু এলাকা দখল করেছে। তারা সেখানে বিরুদ্ধাচরণকারী ও ইহুদিদের গণহারে গুলি করে হত্যা করে। ইহুদি এবং রোমানি ভাষাগোষ্ঠীর লোকদের তারা ধরে নিয়ে গ্যাটোতে রাখে। গেটো একধরনের বস্তি এলাকা যেখানে গাদাগাদি করে সামাজিক ও অর্থনৈতিক সীমাবদ্ধতার মধ্যে এসব মানুষদেরকে মানবেতর জীবনযাপন করতে হত। তারপর গেটো থেকে তাদেরকে মালবাহী ট্রেনে করে শত শত মাইল দূরের বধ্যশিবিরগুলোতে নিয়ে যেত। মালবাহী ট্রেনের পরিবহনেই অধিকাংশ মারা পড়ত। যারা বেঁচে থাকত তাদেরকে গ্যাস কক্ষে পুড়িয়ে হত্যা করা হত। তখনকার জার্মানির আমলাতন্ত্রের সকল শাখা সর্বাত্মকভাবে গণহত্যায় জড়িত ছিল। একজন ইহুদি গণহত্যা বিশেষজ্ঞ বলেছেন তারা জার্মানিকে একটি 'নরঘাতক রাষ্ট্রে' পরিণত করেছিল। চিত্রে ইহুদি গণহত্যা আরও দেখুন আনা ফ্রাঙ্ক তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ পরিকল্পিত গণহত্যা ইহুদী গণহত্যা ১৯৪২-এ গণহত্যা
https://en.wikipedia.org/wiki/The_Holocaust
The Holocaust
The Holocaust was the genocide of European Jews during World War II. Between 1941 and 1945, Nazi Germany and its collaborators systematically murdered some six million Jews across German-occupied Europe, around two-thirds of Europe's Jewish population. The murders were carried out primarily through mass shootings and poison gas in extermination camps, chiefly Auschwitz-Birkenau, Treblinka, Belzec, Sobibor, and Chełmno in occupied Poland. Separate Nazi persecutions killed a similar or larger number of non-Jewish civilians and POWs; the term Holocaust is sometimes used to refer to the persecution of these other groups. The Nazis developed their ideology based on racism and pursuit of "living space", and seized power in early 1933. Meant to force all German Jews regardless of means to attempt to emigrate, the regime passed anti-Jewish laws, encouraged harassment, and orchestrated a nationwide pogrom in November 1938. After Germany invaded Poland in September 1939, occupation authorities began to establish ghettos to segregate Jews. Following the June 1941 invasion of the Soviet Union, 1.5 to 2 million Jews were shot by German forces and local collaborators. Later in 1941 or early 1942, the highest levels of the German government decided to murder all Jews in Europe. Victims were deported by rail to extermination camps where, if they survived the journey, most were killed with poison gas. Other Jews continued to be employed in forced labor camps where many died from starvation, abuse, exhaustion, or being used as test subjects in deadly medical experiments. Although many Jews tried to escape, surviving in hiding was difficult due to factors such as the lack of money to pay helpers and the risk of denunciation. The property, homes, and jobs belonging to murdered Jews were redistributed to the German occupiers and other non-Jews. Although the majority of Holocaust victims died in 1942, the killing continued at a lower rate until the end of the war in May 1945. Many Jewish survivors emigrated outside of Europe after the war. A few Holocaust perpetrators faced criminal trials. Billions of dollars in reparations have been paid, although falling short of the Jews' losses. The Holocaust has also been commemorated in museums, memorials, and culture. It has become central to Western historical consciousness as a symbol of the ultimate human evil.
1344
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A7%81%E0%A6%AF%E0%A6%BC%E0%A6%BE%E0%A6%B0
জাগুয়ার
জাগুয়ার (Panthera onca) হল চারটি বর্তমান বাঘ জাতীয় "বড় বিড়াল" (Panthera গণের সদস্য) গুলির একটি, অন্য তিনটি হল বাঘ, সিংহ ও চিতাবাঘ। জাগুয়ার চিতা ও চিতাবাঘের মতই গায়ে ছাপওয়ালা। তবে জাগুয়ার এদের থেকে অনেক বড় ও বলিষ্ঠ। জাগুয়ার শুধু আমেরিকা মহাদেশীয় ভূখণ্ডে দেখতে পাওয়া যায় (দক্ষিণ আমেরিকা, মধ্য আমেরিকা ও মেক্সিকো)। খাদ্য এদের প্রধাণ খাদ্য দক্ষিণ আমেরিকার বিভিন্ন স্তন্যপায়ী ও সরীসৃপ। শোনা যায় এরা ৮০ প্রজাতিরও বেশি প্রাণী শিকার করে থাকে। এর মধ্যে রয়েছে- বিভিন্ন প্রজাতির মাছ, কচ্ছপ, বানর, হরিণ, টাপির, পেকারি, স্লথ, কুমির জাতীয় প্রাণী কেইম্যান, এবং অ্যানাকোন্ডা ও অন্যান্য সাপ। ছবি গ্যালারী তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ People and Jaguars a Guide for Coexistence Felidae Conservation Fund দক্ষিণ আমেরিকার প্রাণিকুল ১৭৫৮-এ বর্ণিত স্তন্যপায়ী জাগুয়ার শীর্ষ খাদ্যশিকারী প্রাণী প্যানথেরা কার্ল লিনিয়াস কর্তৃক নামকরণকৃত ট্যাক্সা
https://en.wikipedia.org/wiki/Jaguar
Jaguar
The jaguar (Panthera onca) is a large cat species and the only living member of the genus Panthera native to the Americas. With a body length of up to 1.85 m (6 ft 1 in) and a weight of up to 158 kg (348 lb), it is the biggest cat species in the Americas and the third largest in the world. Its distinctively marked coat features pale yellow to tan colored fur covered by spots that transition to rosettes on the sides, although a melanistic black coat appears in some individuals. The jaguar's powerful bite allows it to pierce the carapaces of turtles and tortoises, and to employ an unusual killing method: it bites directly through the skull of mammalian prey between the ears to deliver a fatal blow to the brain. The modern jaguar's ancestors probably entered the Americas from Eurasia during the Early Pleistocene via the land bridge that once spanned the Bering Strait. Today, the jaguar's range extends from the Southwestern United States across Mexico and much of Central America, the Amazon rainforest and south to Paraguay and northern Argentina. It inhabits a variety of forested and open terrains, but its preferred habitat is tropical and subtropical moist broadleaf forest, wetlands and wooded regions. It is adept at swimming and is largely a solitary, opportunistic, stalk-and-ambush apex predator. As a keystone species, it plays an important role in stabilizing ecosystems and in regulating prey populations. The jaguar is threatened by habitat loss, habitat fragmentation, poaching for trade with its body parts and killings in human–wildlife conflict situations, particularly with ranchers in Central and South America. It has been listed as Near Threatened on the IUCN Red List since 2002. The wild population is thought to have declined since the late 1990s. Priority areas for jaguar conservation comprise 51 Jaguar Conservation Units (JCUs), defined as large areas inhabited by at least 50 breeding jaguars. The JCUs are located in 36 geographic regions ranging from Mexico to Argentina. The jaguar has featured prominently in the mythology of indigenous peoples of the Americas, including those of the Aztec and Maya civilizations.
1345
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A4%E0%A6%BE
জাকার্তা
জাকার্তা ();),, যা দাপ্তরিক ভাবে জাকার্তার বিশেষ রাজধানী এলাকা() নামে পরিচিত, হচ্ছে ইন্দোনেশিয়ার রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। এটি জাকার্তা একটি প্রদেশের অন্তর্গত এবং পৌর এলাকার জনবহুল জায়গার মধ্যে একটি। জাকার্তা জাভা দ্বীপের উত্তর-পশ্চিমে অবস্থিত। জাকার্তা ইন্দোনেশিয়ার অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং রাজনৈতিক কেন্দ্রবিন্দু। এটির প্রদেশের সমমর্যাদা সম্পন্ন অবস্থা আছে যার আয়তন । ২০২০ অনুসারে ইহার জনসংখ্যা ১০,৫৬২,০৮৮। জাকার্তা মহানগরীর আয়তন তার মধ্যে বোগর, দিপক, টাংগেরাং, দক্ষিণ টাংগেরাং এবং বেকাসির মতো উপশহর অন্তর্ভুক্ত যার মোট জনসংখ্যা প্রায় সাড়ে তিন কোটি। জাকার্তা থেকে বোর্নিও দ্বীপেের পূর্ব প্রান্তের একটি স্থান নুসান্তারায় রাজধানী সরিয়ে নিতে বিল পাস করেছে ইন্দোনেশিয়ার সরকার। এটি দেশটির উত্তর কালিমানতান প্রদেশে অবস্থিত। স্থানীয় সময় মঙ্গলবার (১৮ জানুয়ারি) দেশটির হাউজ অব রিপ্রেজেন্টেটিভে জাকার্তা থেকে বোর্নিও দ্বীপে রাজধানী স্থানান্তর করার বিল পাস হয়। নাম এবং ব্যুৎপত্তিগত শব্দতত্ত্ব ইতিহাস প্রারম্ভিক উপনিবেশ যুগ উপনিবেশ যুগ স্বাধীনতা যুগ প্রশাসন জাকার্তার প্রশাসনিক বিভাগ সমূহ </center> সরকার পৌর আর্থিক সম্পর্কিত {| class="wikitable" style="text-align:center; width:40%;" |+ জাকার্তা শহর অর্থনীতি: ২০০৭ – ২০১২ (রুপি ট্রিলিয়ন)!Year !width="70"|রাজস্ব !width="70"|ব্যয় |- style="text-align:center;" |২০০৮ প্রকৃত || ১৮.৭ || ১৮.৭ |- style="text-align:center;" |২০০৮ প্রকৃত || ৩২.৯ || ১৬.৪ |- style="text-align:center;" |২০০৯ প্রকৃত|| ২৩.৭ || ১৮.৬ |- style="text-align:center;" |২০১০ প্রকৃত|| ২৬.৮ || ২১.৬ |- style="text-align:center;" |২০১১ প্রকৃত|| ৩১.৮ || ৩১.৭ |- style="text-align:center;" |২০১২ প্রকৃত|| ৪১.৪ || ৪১.৪ |} ইন্দোনেশিয়া পরিসংখ্যান ব্যুরো: Jakarta in Figures ভূগোল ও জলবায়ু ভূগোল জাকার্তা সমূদ্রের ছিলিওয়াং নদীর মুখে জাভা উপকূলের উত্তর পশ্চিমে অবস্থিত। জলবায়ু সংস্কৃতি জাদুঘর রন্ধনপ্রণালী মিডিয়া জাকার্তায় অনেক খবরের প্রকাশনা,টেলিভিশন এবং রেডিও চ্যানেল রয়েছে। বিভিন্ন পত্রিকার মধ্যে রয়েছে দৈনিক, ব্যবসায়িক এবং ডিজিটাল পত্রিকা,যা জাকার্তার উপর ভিত্তি করে চলছে। দৈনিক পত্রিকা গুলোর মধ্যে রয়েছে কম্পাস, কোরান টেম্পল, মিডিয়া ইন্দোনেশিয়া, রিপাবলিকা,সুয়ারা পেমবারুয়ান,সেপুতার ইন্দোনেশিয়া,সুয়ারা কারইয়াল,সিনার হারাপান,ইন্দো পস,জার্নাল ন্যাশনাল, হারিয়ান পেলিটা। ইংরেজি ভাষার দৈনিক পত্রিকাগুলোও প্রতিদিন প্রকাশিত হয়ে থাকে, উদাহরণস্বরুপ দি জাকার্তা পোস্ট এবং দি জাকার্তা গ্লোব। চাইনিজ ভাষার পত্রিকাগুলো হল ইন্দোনেশিয়া শাং বাও(印尼商报), হারিয়ান ইন্দোনেশিয়া (印尼星洲日报) এবং গুয়ো জি রি বাও (国际日报)। জাপানি ভাষার একমাত্র পত্রিকা হল দি ডেইলি জাকার্তা শিমবুন(じゃかるた新聞)। জাকার্তার আরো দৈনিক পত্রিকা রয়েছে, যেমন পস কোটা,ওয়ারটা কোটা,কোরান জাকার্তা,আঞ্চলিক পাঠকদের জন্য বেরিটা কোটা; বিসনিস ইন্দোনেশিয়া,ইনভেস্টর ডেইলি,কোনটান,হারিয়ান নেরাকা(ব্যবসায়ী খবর), এছাড়াও টপ স্কোর(Top Skor) সকার(খেলার খবর)। জাকার্তায় রয়েছে রাষ্ট্রীয় গণ মাধ্যম টিভিআরআই (TVRI) এবং বেসরকারি জাতীয় টেলিভিশন গুলোর প্রধান কার্যালয়। বেসরকারি টিভি গুলোর মধ্যে রয়েছে আরসিটিআই (RCTI), ট্রান্স৭ (Trans 7|TV7), টিভি ওয়ান(TV ONE), মেট্রো টিভি(Metro TV), এসসিটিভি(SCTV), গ্লোবাল টিভি(Global TV), এন টিভি(ANTV), ট্রান্স টিভি(Trans TV), কমপাস টিভি(Kompas TV), এমএনসি টিভি(MNCTV), ইন্দোশিয়ার(Indosiar), NET. এবং আর টিভি(RTV)। জাকার্তায় আঞ্চলিক টিভি চ্যানেলও রয়েছে যেমন জাক টিভি(JAK TV), ও টিভি(O TV), এলসিনটা টিভি(Elshinta TV) and ধাই টিভি ইন্দোনেশিয়া (DAAI TV)। শহরটি দেশের প্রধান পরিশোধ ভিত্তিক সেবার কেন্দ্রবিন্দু। জাকার্তায় ব্যাপক পরিসরে কেবল টিভি চ্যানেল রয়েছে,এগুলোর মধ্যে ফাস্ট মিডিয়া এবং টেলকম ভিশন। জাকার্তায় স্যাটেলাইট টেলিভিশন(DTH) এখনো অনেক স্বীকৃতি লাভ করেছে। বিশিষ্ট বিনোদন সেবা গুলোর মধ্যে রয়েছে ইন্দোভিশন(Indovision), ওকেভিশন(Okevision),ইয়েস টিভি(Yes TV),ট্রান্সভিশন(Transvision), এবং আয়োরা টিভি(Aora TV)। অনেক টিভি স্টেশন রয়েছে যেগুলো এনালগ কিন্তু এখন কিছু স্টেশন সরকারি পরিবর্তনের পরিকল্পনা অনুযায়ী ডিজিটাল সংকেতে(DVB-T2) পরিবর্তন করছে। জাকার্তায় বাহান্নটি FM ব্যান্ড রেডিও স্টেশন সহ পঁচাত্তরটি রেডিও স্টেশন রয়েছে এবং তেইশটি রেডিও স্টেশন রয়েছে যেগুলো AM ব্যান্ডে সম্প্রচারিত করে। অর্থনীতি মূল নিবন্ধ:জাকার্তার অর্থনীতি বাজার জাকার্তা জাতির শপিংয়ের কেন্দ্রস্থল এবং বাজার করার জন্য দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার সবচেয়ে ভাল জায়গা গুলোর মধ্যে একটি। জাকার্তায় শহটির বিভিন্ন ধরনের দোকান এবং ঐতিহ্যগত বাজার রয়েছে। সর্বমোট ৫৫০ হেক্টর নিয়ে একটি একক শহরে জাকার্তার বিশ্বের সর্ববৃহৎ শপিং মলের জায়গা রয়েছে। প্রত্যেক বছর জাকার্তার ২০১২ সালে প্রায় ৭৩ অংশগ্রহণকারী শপিং সেন্টারের উদ্‌যাপন উপলক্ষে জুন এবং জুলাই মাসে "জাকার্তা বৃহৎ বিক্রয়" উদযাপিত হয়। মল যেমন প্লাজা ইন্দোনেশিয়া, গ্র‍্যান্ড ইন্দোনেশিয়া, শপিং টাউন,প্লাজা সিনায়ান,সিনায়ান সিটি এবং প্যাসিফিক প্লেস বিভিন্ন ধরনের বিলাসবহুল ব্র‍্যান্ড বাছাই করার সুবিধা প্রধান করে। মল টামান এংগ্রিক এবং সিপুটরা ওয়াল্ড জাকার্তা যেগূলো জাকার্তায় শপিং মলের নতুন ধারণা বহণ করে... সড়ক স্থাপনা পানি সরবরাহ দৃশ্য স্থাপনা জনসংখ্যা সমগ্র ইন্দোনেশিয়ায় কর্মসংস্থানের সুযোগ সুবিধার জন্য জাকার্তা সবার আগে, ফলে জাকার্তা অভিবাসী আধিক্য শহরে পরিনত হয়েছে। ১৯৬১ সালের আদম শুমারিতে দেখা গেছে যে শহরের জনসংখ্যার ৫১% মাত্র জাকার্তায় জন্মগ্রহণ করেছে, যাতে অভ্যন্তরীণ অভিবাসন পরিবার পরিকল্পনা কর্মসূচির প্রভাব উপেক্ষা করা হয়েছে। ১৯৬১ থেকে ১৯৮০ সালের মধ্যে জাকার্তার জনসংখ্যা দ্বিগুণ হয়ে যায় এবং ১৯৮০-১৯৯০ সময়কালে শহরের জনসংখ্যা বার্ষিক বৃদ্ধি ৩.৭% ছিল। ২০১০ সালের আদমশুমারিতে প্রায় ৯.৫৮ মিলিয়ন জনসংখ্যা গণনা করা হয়েছে, এটি সরকারের অনুমানের চেয়েও ভাল ছিল। ১৯৭০ সালে জনসংখ্যা ছিল ৪.৫ মিলিয়ন যা ২০১০ সালে বেড়ে ৯.৫ মিলিয়ন হয়, কেবলমাত্র আইনজীবিদের মধ্যে গণনায়, গ্রেটার জাকার্তার ১৯৭০ সালের জনসংখ্যা ৮.২ মিলিয়ন থেকে বেড়ে ২০১০ সালে ২৮.৫ মিলিয়ন হয়েছে। ২০১৪ সালের তথ্য অনুসারে, জাকার্তার জনসংখ্যা ছিল দশ কোটি এবং জনসংখ্যার ঘনত্ব ছিল প্রতি বর্গ কিলোমিটারে ১৫,১৪৭ জন।Puslitbang Ekonomi dan Pembangunan, Perubahan Pemanfaatan Tanah di Jabotabek, Jakarta: Lembaga Ilmu Pengetahuan Indonesia, 1998 ২০১৪ সালে গ্রেটার জাকার্তার জনসংখ্যা ৩০ কোটির মতো ছিল, যা ইন্দোনেশিয়ার সামগ্রিক জনসংখ্যার ১১%। ২০৩০ সালের মধ্যে ৩৫,৬ মিলিয়ন জনসংখ্যা নিয়ে এটি বিশ্বের বৃহত্তম অতিমহানগরী হওয়ার পূর্বাভাস পাওয়া যায়। ২০১০ সালে লিঙ্গ অনুপাত ছিল ১০২.৮ জন (পুরুষ প্রতি ১০০ জন নারী) এবং ২০১৪ সালে এ অনুপাত ছিল ১০১.৩। জাতিগত সম্প্রদায় এবং ধর্ম জাকার্তা বহুভাষা ও ধর্মীয়ভাবে বৈচিত্র্যময় শহর। ২০১০ এর আদমশুমারি অনুসারে নগরীর জনসংখ্যার ৩৬.১৭% জন জাভানিজ, ২৮.২৯% বেতাভি, ১৪.৬১% সুন্দানিজ, ৬.৬২% চীনা, ৩.৪২% বাটক, ২.৮৫% মিনাংবাউ, ০.৯% মালয়েশিয়া, ০.০৮% ইন্দো এবং অন্যান্য জাতীগোষ্ঠি ছিল। ২০১৭ সালে, জাকার্তার ধর্মীয় পরিসংখ্যান অনুযায়ী ইসলাম (৮৩.৪৩%), প্রোটেস্ট্যান্টিজম (৮.৩৬%), ক্যাথলিক (৮.০%), বৌদ্ধধর্ম (৩.৭৪%), হিন্দু (০.৯৯%), এবং কনফুসিয়ানিজম (০.০১%) ধর্মের লোক বসবাস করে। প্রায় ২৩১ জন লোক ধর্ম অনুসরণ করার দাবি করেছিল। জাকার্তার বেশিরভাগ পেসেন্ট্রেন (ইসলামিক বোর্ডিং স্কুল) সনাতনবাদী নাহদলাতুল উলামার সাথে সম্পৃক্ত, আধুনিকতাবাদী সংগঠনগুলি বেশিরভাগ শিক্ষিত নগর অভিজাত এবং বণিক ব্যবসায়ীদের একটি আর্থ-সামাজিক শ্রেণি সরবরাহ করে। তারা শিক্ষা, সমাজকল্যাণমূলক কর্মসূচি এবং ধর্মীয় প্রচারকে অগ্রাধিকার দেয়। জাকার্তায় অনেক ইসলামী সংগঠনের সদর দফতর রয়েছে, নাহদলাতুল উলামা, ইন্দোনেশিয়ান ওলামা কাউন্সিল, মুহাম্মদিয়া, জারিংন ইসলাম লিবারাল, এবং ফ্রন্ট পেম্বেলা ইসলাম প্রভৃতি। জাকার্তার আর্চডিয়োসিসে রোমান ক্যাথলিক সম্প্রদায়ের একটি মহানগর রয়েছে, যা ধর্মীয় প্রদেশের অংশ হিসাবে পশ্চিম জাভার অন্তর্ভুক্ত। এখানে একটি বাহাই সম্প্রদায়ও রয়েছে। যোগাযোগ ব্যবস্থা রেলপথ আকাশপথ বৈদ্যুতিক যোগাযোগব্যবস্থা জনপথ পরিবহন ব্যবস্থা জনপথ নৌপথ সমুদ্র পর্যটন বৈশিষ্ট্য পার্ক খেলাধুলা শিক্ষা মূল নিবন্ধ:জাকার্তার শিক্ষা ব্যবস্থা জাকার্তা অনেকগুলো বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রস্থল,তার মধ্যে ইউনিভার্সিটি অব জাকার্তা জাকার্তায় অবস্থিত সর্ববৃহৎ এবং পুরাতন তৃতীয় পর্যায়ের শিক্ষা প্রতিষ্ঠান । এটি একটি গণ প্রতিষ্ঠান যার ক্যাম্পাস রয়েছে সালেম্বা (কেন্দ্রীয় জাকার্তা) এবং দিপকে,যা জাকার্তার দক্ষিণে অবস্থিত। ইউনিভার্সিটি অব ইন্দোনেশিয়া ছাড়াও, জাকার্তায় আরো আলাদা তিনটি গণ বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে,এগুলো হলঃ শরিফ হিদায়াতউল্লাহ স্টেট ইসলামিক ইউনিভার্সিটি জাকার্তা, স্টেট ইউনিভার্সিটি অব জাকার্তা(ইউএনজে) এবং ইউনিভার্সিটি অব পেমবানগুনান ন্যাশনাল "ভেটেরান" জাকার্তা( ইউপিএন "ভেটেরান" জাকার্তা)। জাকার্তায় অবস্থিত কিছু বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে ট্রিসাকতি ইউনিভার্সিটি, মারকু ভুয়ানা ইউনিভার্সিটি, তারুময়ানাগারা ইউনিভার্সিটি, আমা জায়া ইউনিভার্সিটি, পেলিটা হারাপান ইউনিভার্সিটি, বিনা নুসানতারা ইউনিভার্সিটি, প্যানকেসিলা ইউনিভার্সিটি। স্টোভিয়া(STOVIA, School tot Opleiding van Indische Artsen'') ছিল জাকার্তায় অবস্থিত সর্বপ্রথম উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় যা ১৮৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয়। বৃহৎ শহর এবং রাজধানী হওয়ার কারণে, ইন্দোনেশিয়ার বিভিন্ন অঞ্চল থেকে আসা ছাত্রছাত্রীদের জন্য জাকার্তা বাসস্থানের ব্যবস্থা করে। তাদের মধ্যে অনেকেই হলগুলোতে অথবা বাড়িতে বসবাস করে। মৌলিক শিক্ষার জন্য, বিভিন্ন ধরনের প্রাথমিক এবং মাধ্যমিক স্কুল রয়েছে যা পাবলিক("জাতীয়"), প্রাইভেট("জাতীয় এবং দোভাষী জাতীয় সংযুক্ত") এবং আন্তর্জাতিক স্কুলগুলোকে একত্রে বেঁধেছে। ইন্দোনেশিয়ায় অবস্থিত প্রধান চারটি আন্তর্জাতিক বিদ্যালয়ের মধ্যে রয়েছে গান্ধী মেমোরিয়াল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, IPEKA ইন্টারন্যাশনাল খ্রিষ্টীয়ান স্কুল, জাকার্তা ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এবং দ্যা ব্রিটিশ ইন্টারন্যাশনাল স্কুল,জাকার্তা(BIS)। অন্যান্য আন্তর্জাতিক স্কুলগুলোর মধ্যে রয়েছে জাকার্তা ইন্টারন্যাশনাল কোরিয়ান স্কুল, বিনা বাংসা স্কুল, জাকার্তা ইন্টারন্যাশনাল মাল্টিকালাচারাল স্কুল, Australian International School, নিউজিল্যান্ড ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, সিঙ্গাপুর ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, এবং সেকোলাহ পেলিটা হারাপান. আন্তর্জাতিক সম্পর্ক জাকার্তা অন্যান্য শহর গুলোর সাথে সহযোগী শহর হিসেবে চুক্তিতে সাক্ষর করে,এদের মধ্যে একটি হল কাসাবলনংকা যা মরক্কোর একটি বৃহৎ শহর। ইহা ১৯৯০ সালের ২১শে সেপ্টেম্বর সহযোগী শহর চুক্তিতে সাক্ষর করে। দুটি শহরের মধ্যে বন্ধুত্ব বাড়ানোর লক্ষ্যে, জালান কাসাবলাংকা, যা উত্তর জাকার্তায় বাজার ও ব্যবসায়িক কেন্দ্রগুলোর জন্য বিখ্যাত এবং এর নামকরণ জাকার্তার মরক্কো সহযোগী শহরের নামে করা হয়। বর্তমানে কাসাবলংকায় জাকার্তার নামে কোন সড়ক নেই। যাহোক, অন্যদিকে রাবাতে যা মরক্কোর রাজধানী শহর, ১৯৬০ সালে প্রথম ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্টের পরিদর্শনের স্মৃতিচিহ্ন ও বন্ধুত্বের চিহ্নও রক্ষার্থে একটি রাজপথ সুকার্ণোর নামে করা হয়েছে। জাকার্তা বৃহত্তম শহর ২১ এশিয়া নেটওয়ার্ক এবং জলবায়ু নেতৃত্ব C40 শহরগুলোরও সদস্য। সংযুক্ত এবং অন্তর্ভুক্ত শহর সমুহ তথ্যসূত্র ইন্দোনেশিয়ার শহর এশিয়ার রাজধানী রাজধানী জেলা ও অঞ্চল জাকার্তা ইন্দোনেশিয়ার প্রদেশ
https://en.wikipedia.org/wiki/Jakarta
Jakarta
Jakarta (; Indonesian pronunciation: [dʒaˈkarta] , Betawi: Jakartè), officially the Special Capital Region of Jakarta (Indonesian: Daerah Khusus Ibukota Jakarta, abbreviated to DKI Jakarta) and formerly known as Batavia until 1949, is the capital and largest city of Indonesia. Lying on the northwest coast of Java, the world's most populous island, Jakarta is the largest metropole in Southeast Asia, and serves as the diplomatic capital of ASEAN. The Special Capital Region has a status equivalent to that of a province and is bordered by two other provinces: West Java to the south and east; and (since 2000, when it was separated from West Java) Banten to the west. Its coastline faces the Java Sea to the north, and it shares a maritime border with Lampung to the west. Jakarta's metropolitan area is ASEAN's second largest economy after Singapore. Jakarta is the economic, cultural, and political centre of Indonesia. Although Jakarta extends over only 661.23 km2 (255.30 sq mi) and thus has the smallest area of any Indonesian province, its metropolitan area covers 7,076.31 km2 (2,732.18 sq mi), which includes the satellite cities of Bogor, Depok, Tangerang, South Tangerang, and Bekasi, and has an estimated population of 32.6 million as of 2022, making it the largest urban area in Indonesia and the second-largest in the world (after Tokyo). Jakarta ranks first among the Indonesian provinces in the human development index. Jakarta's business and employment opportunities, along with its ability to offer a potentially higher standard of living compared to other parts of the country, have attracted migrants from across the Indonesian archipelago, making it a melting pot of numerous cultures. Jakarta is one of the oldest continuously inhabited cities in Southeast Asia. Established in the fourth century as Sunda Kelapa, the city became an important trading port for the Sunda Kingdom. At one time, it was the de facto capital of the Dutch East Indies, when it was known as Batavia. Jakarta was officially a city within West Java until 1960 when its official status was changed to a province with special capital region distinction. As a province, its government consists of five administrative cities and one administrative regency. Jakarta is an alpha world city and is the seat of the ASEAN secretariat. Financial institutions such as the Bank of Indonesia, Indonesia Stock Exchange, and corporate headquarters of numerous Indonesian companies and multinational corporations are located in the city. In 2023, the city's GRP PPP was estimated at US$724.010 billion. Jakarta's main challenges include rapid urban growth, ecological breakdown, air pollution, gridlocked traffic, congestion, and flooding due to subsidence (sea level rise is relative, not absolute). Part of North Jakarta is sinking up to 17 cm (6.7 inches) annually, meanwhile the southern part is relatively safe. This has made the northern part of the city more prone to flooding and one of the fastest-sinking capitals in the world. In response to these challenges, in August 2019, President Joko Widodo announced plans to move the capital from Jakarta to the planned city of Nusantara, in the province of East Kalimantan on the island of Borneo. The MPR approved the move on 18 January 2022. The Indonesian government is not abandoning Jakarta after announcing plans to move the country's capital, its planning minister said, pledging to spend US$40 billion, which is more than cost to build Nusantara, to save the city in the next decade.
1346
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AE%E0%A6%BE%E0%A6%87%E0%A6%95%E0%A6%BE
জ্যামাইকা
জ্যামাইকা বা জামাইকা ( ) ক্যারিবীয় সাগরে অবস্থিত একটি দ্বীপরাষ্ট্র। জ্যামাইকার আয়তন , এটি বৃহৎ অ্যান্টিলিস এবং ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে (কিউবা এবং হিস্পানিয়োলার পরে) তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। জ্যামাইকা কিউবার দক্ষিণে প্রায় এবং হিস্পানিয়োলা থেকে (হাইতি এবং ডোমিনিকান প্রজাতন্ত্রের দ্বীপের) পশ্চিমে অবস্থিত; ব্রিটিশ শাসিত কেইম্যান দ্বীপপুঞ্জের উত্তর-পশ্চিমে প্রায় পর্যন্ত বিস্তৃত। মূলত আদিবাসী তাইনো জনগোষ্ঠীর বাসিন্দাদের দখল থেকে দ্বীপটি ১৪৯৪ সালে ক্রিস্টোফার কলম্বাসের আগমনের পরে স্পেনের শাসনাধীন হয়েছিল। অনেক আদিবাসীকে হত্যা করা হয়েছিল বা এমন রোগে মারা গিয়েছিল যার প্রতিরোধ ক্ষমতা তাদের ছিল না, তারপরে স্পেনীয়রা তখন প্রচুর সংখ্যক আফ্রিকান দাসকে জ্যামাইকাতে শ্রমিক হিসাবে নিয়ে এসেছিল। ১৬৫৫ সাল পর্যন্ত দ্বীপটি স্পেনের দখলে ছিল, যখন ইংল্যান্ড (পরে গ্রেট ব্রিটেন) এটি জয় করে, এর নাম পরিবর্তন করে জ্যামাইকা রেখেছিল। ব্রিটিশ উপনিবেশিক শাসনের অধীনে জামাইকা আফ্রিকান দাস এবং পরবর্তীকালে তাদের বংশধরের উপর নির্ভরশীল একটি উপনিবেশিক অর্থনীতিতে শীর্ষস্থানীয় চিনি রপ্তানিকারক দেশে পরিণত হয়েছিল। ব্রিটিশরা ১৮৩৮ সালে সমস্ত ক্রীতদাসকে সম্পূর্ণরূপে মুক্তি দিয়েছিল এবং অনেক স্বাধীনতাকামী ব্যক্তি উপনিবেশের হয়ে কাজ করার পরিবর্তে জীবিকার জন্য খামারের কাজকে বেছে নিয়েছিল। ১৮৪০ দশকের শুরুতে, ব্রিটিশরা চীনা এবং ভারতীয় শর্তাবদ্ধ শ্রম ব্যবস্থা ব্যবহার করে উপনিবেশে কাজ দেওয়া শুরু করেছিল। দ্বীপটি ১৯৬২ সালের ৬ই আগস্ট যুক্তরাজ্য থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। ২.৯ মিলিয়নের বেশি জনসংখ্যা নিয়েজ্যামাইকা আমেরিকার তৃতীয় সর্বাধিক জনবহুল ইংরেজভাষী দেশ (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার পরে) এবং ক্যারিবীয় অঞ্চলে চতুর্থ জনবহুল দেশ। কিংস্টন দেশটির রাজধানী এবং বৃহত্তম শহর। জ্যামাইকানদের বেশিরভাগ হল সাহারা-নিম্ন আফ্রিকা বংশোদ্ভূত, এছাড়াও ইউরোপীয়, পূর্ব এশীয় (প্রাথমিকভাবে চীনা), ভারতীয়, লেবানীয় এবং মিশ্র-জাতি সংখ্যালঘু উল্লেখযোগ্য। ১৯৬০ দশক থেকে কাজের জন্য উচ্চ অভিবাসনের কারণে, বিশেষ করে কানাডা, যুক্তরাজ্য এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে জ্যামাইকার বৃহৎ অভিবাসী রয়েছে। দেশটির একটি বৈশ্বিক প্রভাব রয়েছে যা তার ছোট আকারকে অস্বীকার করে; এটি রাস্তাফারি ধর্মের জন্মস্থান ছিল, রেগে সংগীত (এবং ডাব, স্কা এবং ড্যান্সহল সম্পর্কিত ধারাগুলি) এবং এটি খেলাধুলায়, বিশেষত ক্রিকেট, স্প্রিন্ট (দৌড় বিশেষ) এবং মল্লক্রীড়ায় আন্তর্জাতিকভাবে লক্ষণীয়। জ্যামাইকা একটি উচ্চ-মধ্যম আয়ের দেশ এবং এর অর্থনীতির পর্যটন নির্ভর; এখানে বছরে গড়ে ৪.৩ মিলিয়ন পর্যটক আসেন। রাজনৈতিকভাবে এটি একটি কমনওয়েলথ রাজ্য, যার রানী হিসাবে দ্বিতীয় এলিজাবেথ আছেন। দেশে তাঁর নিযুক্ত প্রতিনিধি হলেন জ্যামাইকার গভর্নর জেনারেল, এটি ২০০৯ সাল থেকে প্যাট্রিক অ্যালেনের অধীনস্থ একটি অফিসে কার্যক্রম পরিচালিত করছে। অ্যান্ড্রু হলনেস ২০১৬ সালের মার্চ থেকে জামাইকার প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। জ্যামাইকা একটি সংসদীয় সাংবিধানিক রাজতন্ত্র যাতে জ্যামাইকার দ্বি-সংসদের সংসদে ন্যস্ত আইনী ক্ষমতা রয়েছে, যার মধ্যে একটি নিযুক্ত সিনেট এবং সরাসরি নির্বাচিত প্রতিনিধি পরিষদ (হাউস অফ রিপ্রেসেন্টেটিভস) রয়েছে। ব্যুৎপত্তি তাইনো আদিবাসীরা তাদের ভাষায় এটি জেইমাখা () দ্বীপ নামে পরিচিত ছিল, যার অর্থ ছিল "কাঠ ও জলের ভূমি" বা "বসন্তের ভূমি"। ক্রিস্টোফার কলম্বাসের রেকর্ড অনুসারে দ্বীপের প্রথম দিকের তাইনো নাম ইয়ামায়ে দেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়েছিল। সাধারণ কথাবার্তায় জ্যামাইকানরা তাদের স্বদেশ দ্বীপটিকে "রক" হিসাবে উল্লেখ করে। "জামরোক", "জামডাউন" (জামাইকান পাতোইসে "জামদুং") বা সংক্ষেপে "জা" এর মতো নামগুলি অপভ্রংশ থেকে প্রাপ্ত হয়েছে। ইতিহাস প্রাগৈতিহাসিক মানুষ খ্রিস্টপূর্ব ৪০০০-১০০০ সাল থেকে জ্যামাইকাতে বসতি স্থাপন করেছে। এই মানুষগুলির সম্পর্কে খুব কমই জানা গিয়েছে। অন্য আরেকটি দল, তাদের মৃৎশিল্পের জন্য তারা "রেডওয়্যার জাতি" হিসাবে পরিচিত, ধারণানুসারে তারা ৬০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে এসেছিল, এরপরে প্রায় ৮০০ খ্রিস্টাব্দের দিকে তাইনোরা আসে, সম্ভবত তারা দক্ষিণ আমেরিকা থেকে এসেছিল। তারা কৃষি ও মৎস্য শিকারের মাধ্যমে তাদের অর্থনীতি গড়ে তুলেছিল এবং তারা সংখ্যায় প্রায় ৬০,০০০ এর মতো ছিল এবং মনে করা হয়, ক্যাসিকস (প্রধানগণ) নেতৃত্বে প্রায় ২০০ গ্রামে দলবদ্ধ হয়েছিল। জামাইকার দক্ষিণ উপকূল সর্বাধিক জনবহুল ছিল, বিশেষত এই অঞ্চলটির আশেপাশে এখন ওল্ড হারবার নামে পরিচিত। যদিও প্রায়শই ইউরোপীয়দের সাথে সংস্পর্শে আসার পরে তারা বিলুপ্ত হয়ে গেছে বলে মনে করা হয়, কিন্তু বাস্তবে তাইনো তখনও জামাইকাতে বাস করত যখন ১৬৫৫ সালে ইংরেজরা দ্বীপটির নিয়ন্ত্রণ নিয়েছিল। কিছু অভ্যন্তরীণ অঞ্চলে পালিয়ে গিয়ে আফ্রিকান মেরুন সম্প্রদায়ের সাথে মিশে গিয়েছিল। জ্যামাইকান জাতীয় ঐতিহ্য সংস্থা তাইনোরর কোনও অবশিষ্ট প্রমাণ শনাক্ত এবং নথিভুক্ত করার চেষ্টা করছে। স্পেনীয় শাসন (১৫০৯-১৬৫৫) ক্রিস্টোফার কলম্বাস প্রথম ইউরোপীয় যিনি জ্যামাইকা দেখেছিলেন, ১৪৯৪ সালে আমেরিকায় দ্বিতীয় সমুদ্রযাত্রায় সেখানে অবতরণের পর স্পেনের জন্য দ্বীপটি দাবি করেছিলেন। তিনি সম্ভাব্য অবতরণ করেছিলেন ড্রাই হারবার, যার ডিসকভারি বে নামেও পরিচিত এবং সেন্ট অ্যান'স বে কে কলম্বাস "সেন্ট গ্লোরিয়া" নামকরণ করেছিলেন। তিনি পরে ১৫০৩ সালে ফিরে আসেন; যাইহোক, তাঁর জাহাজ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল এবং তিনি তাঁর নাবিকদল সহ উদ্ধার হওয়ার অপেক্ষায় এক বছর জ্যামাইকায় থাকতে বাধ্য হয়েছিলেন। সেন্ট অ্যান'স বে থেকে দেড় কিলোমিটার পশ্চিমে সেভিলা দ্বীপে প্রথম স্পেনীয় বসতি স্থাপন করা হয়েছিল, যা ১৫০৯ সালে জুয়ান ডি এসকুইভেল দ্বারা প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল কিন্তু ১৫২৪ এর কাছাকাছি এটি অস্বাস্থ্যকর বলে বিবেচিত হওয়ায় পরিত্যাগ করা হয়েছিল। রাজধানী স্প্যানিশ টাউনে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল, তারপরে সেন্ট জাগো দে লা ভেগা নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিল, যা প্রায় ১৫৩৪ সাল নাগাদ (বর্তমানে সেন্ট ক্যাথরিনে)। অন্যদিকে, তাইনোরা প্রচুর সংখ্যায় মারা যেতে শুরু করেছিল, উভয়দিক থেকে তারা এমন রোগে আক্রান্ত হয়েছিল যার প্রতিরোধ ক্ষমতা তাদের ছিল না এবং এটি স্পেনীয় দাসদের থেকে এসেছিল বলে ধারণা করা হয়েছিল। এর পরিপ্রেক্ষিতে স্পেনীয়রা আফ্রিকা থেকে দ্বীপে দাস আমদানি শুরু করে। অনেক ক্রীতদাস জ্যামাইকার অভ্যন্তরে প্রত্যন্ত অঞ্চলে পালিয়ে যেতে সক্ষম হয় এবং সহজেই তাদের সুরক্ষিত এলাকায় স্বায়ত্তশাসিত সম্প্রদায় গঠন করে, যা অবশিষ্ট তাইনোর সাথে মিশে যায়; এই সম্প্রদায়গুলি মেরুন নামে পরিচিত হয়ে ওঠেছিল। অনেক ইহুদি দ্বীপটিতে বসবাসের জন্য স্পেনীয় অনুসন্ধান থেকে পালিয়ে যায়। তারা ধর্মান্তরিত হয়ে জীবনযাপন করতো এবং প্রায়শই স্পেনীয় শাসকরা তাদের উপর নির্যাতন চালাত, কেউ কেউ স্পেনীয় সাম্রাজ্যের চালানের বিরুদ্ধে গিয়ে জলদস্যুতে পরিণত হয়েছিল। সপ্তাদশ শতকের গোড়ার দিকে অনুমান করা হয় যে জ্যামাইকায় ২,৫০০-৩,০০০ জনের বেশি মানুষ বাস করতো না। প্রাথমিক ব্রিটিশ আমল ইংরেজরা এই দ্বীপে আগ্রহ নিতে শুরু করেছিল এবং হিস্পানিয়োলায় সান্তো ডোমিংগো জয় করার ব্যর্থ প্রচেষ্টার পর স্যার উইলিয়াম পেন এবং জেনারেল রবার্ট ভেনাবেলস ১৬৫৫ সালে জ্যামাইকা আক্রমণের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১৬৫৭ সালে ওচো রিওসে এবং ১৬৫৮ সালে রিও নুয়েভোতে যুদ্ধের ফলে স্পেনীয়রা পরাজিত হয়েছিল; ১৬৬০ সালে জুয়ান ডি বোলাসের নেতৃত্বে মেরুন সম্প্রদায় স্পেনীয়দের কাছ থেকে সরে এসেছিল এবং ইংরেজদের সমর্থন শুরু করেছিল। তাদের সহায়তায় স্পেনীয়দের পরাজয় নিশ্চিত হয়েছিল। যখন ইংরেজরা জ্যামাইকা দখল করে নিয়েছিল, স্পেনীয় ইহুদিদের ও যারা দ্বীপে থাকতে পছন্দ করতো তাদের বাদ দিয়ে বেশিরভাগ স্পেনীয় উপনিবেশীরা পালিয়ে গিয়েছিল। জ্যামাইকা ছাড়ার আগে স্পেনীয় দাসমালিকেরা তাদের ক্রীতদাসদের মুক্ত করে দিয়েছিল। অনেক দাস ইতোমধ্যে প্রতিষ্ঠিত মেরুন সম্প্রদায়ের সাথে যোগ দিয়ে পাহাড়ে ছড়িয়ে পড়েছিল। শতাব্দীর দাসত্বের সময়, জ্যামাইকান মেরুনরা জ্যামাইকার পার্বত্য অঞ্চলের অভ্যন্তরে মুক্ত সম্প্রদায় প্রতিষ্ঠা করেছিল, যেখানে তারা জুয়ান ডি সেরাসের মতো মেরুন নেতাদের নেতৃত্বে প্রজন্ম ধরে তাদের স্বাধীনতা ও স্বাতন্ত্র্যতা বজায় রেখেছিল। এদিকে, স্পেনীয়রা দ্বীপটি পুনরায় দখল করার জন্য বেশ কিছু প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, কিন্তু ব্রিটিশরা স্পেনীয় জাহাজে ক্যারিবীয় জলদস্যুদের আক্রমণকে সমর্থন করেছিল; ফলশ্রুতিতে জলদস্যুতা জ্যামাইকাতে ব্যাপক আকার ধারণ করেছিল, পোর্ট রয়্যাল শহর তার অনাচারের জন্য কুখ্যাত হয়ে ওঠেছিল। স্পেন পরে মাদ্রিদ চুক্তির (১৬৭০) মাধ্যমে দ্বীপটির ইংরেজ দখলকে স্বীকৃতি দেয়। ফলস্বরূপ, ইংরেজ কর্তৃপক্ষ জলদস্যুদের জঘন্যতম বাড়াবাড়ির লাগাম টানতে চেয়েছিল। ১৬৬০ সালে, জ্যামাইকার জনসংখ্যার মধ্যে প্রায় ৪,৫০০ জন শ্বেতাঙ্গ এবং ১,৫০০ কৃষ্ণাঙ্গ ছিল। ১৬৭০ দশকের শুরুর দিকে, ইংরেজরা যেমন আখের আবাদ গড়ে তুলেছিল, তেমনি বিপুল সংখ্যক ক্রীতদাস দ্বারা কাজ করানো হত, যার ফলে আফ্রিকার কৃষ্ণাঙ্গ জনসংখ্যার একটি সংখ্যাগরিষ্ঠ হয়ে উঠেছিল। জ্যামাইকার আইরিশরাও দ্বীপের প্রাথমিক জনসংখ্যার একটি বড় অংশ গঠন করেছিল, যা ১৭ শতকের শেষের দিকে দ্বীপে শ্বেতাঙ্গ জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশ ছিল, যা ইংরেজ জনসংখ্যার দ্বিগুণ ছিল। ১৬৫৫ সালের বিজয়ের পর তাদেরকে চুক্তিভিত্তিক শ্রমিক এবং সৈনিক হিসেবে আনা হয়েছিল। তিন রাজ্যের চলমান যুদ্ধের ফলে আইরিশদের অধিকাংশই আয়ারল্যান্ড থেকে রাজনৈতিক যুদ্ধবন্দী হিসেবে জোর করে বহন করা হয়েছিল। দ্বীপে বিপুল সংখ্যক আইরিশের অভিবাসন ১৮ শতক পর্যন্ত অব্যাহত ছিল। ১৬৬৪ সালে জ্যামাইকার বিধানসভা তৈরির সঙ্গে স্থানীয় সরকারের একটি সীমিত রূপ চালু করা হয়েছিল; যাইহোক, এটি শুধুমাত্র অল্প সংখ্যক ধনী উপনিবেশ মালিকদের প্রতিনিধিত্ব করেছিল। ১৬৯২ সালে, সম্পূর্ণ দ্বীপটি ভূমিকম্পে কেঁপে উঠেছিল যার ফলে কয়েক হাজার মানুষ মারা গিয়েছিল এবং পোর্ট রয়্যাল প্রায় সম্পূর্ণ ধ্বংস হয়েছিল। অষ্টাদশ -ঊনবিংশ শতাব্দী ১৭০০ দশকে অর্থনীতি চাঙ্গা হয়েছিল, মূলত চিনি এবং অন্যান্য ফসলের উপর ভিত্তি করে যেমন কফি, তুলা এবং নীল। এই সমস্ত ফসল উৎপাদনে কৃষ্ণাঙ্গ ক্রীতদাসরা কাজ করত, যারা ছোট উপনিবেশ মালিকদের সম্পত্তি হিসাবে ছিল এবং স্বল্প আয়ু এবং প্রায়ই নিষ্ঠুর জীবনযাপন করতো। ১৮ শতকে, ক্রীতদাসরা পালিয়ে যায় এবং ক্রমবর্ধমান সংখ্যায় মেরুনদের সাথে যোগ দেয় এবং ফলস্বরূপ প্রথম মেরুন যুদ্ধ (১৭২৮ - ১৭৩৯/৪০) ঘটেছিল, যা অচলাবস্থার মধ্যে শেষ হয়েছিল। ব্রিটিশ সরকার শান্তির জন্য আবেদন করে, এবং ১৭৩৯ সালে কাজোউ এবং অ্যাকম্পং এর নেতৃত্বে লিওয়ার্ড মেরুনদের সাথে এবং ১৭৪০ সালে কোয়াও এবং রানী ন্যানির নেতৃত্বে উইন্ডওয়ার্ড মারুনের সাথে চুক্তি স্বাক্ষর করে। একটি বড় দাস বিদ্রোহ, যা ট্যাকির বিদ্রোহ নামে পরিচিত, ১৯৭০ সালে শুরু হয়েছিল কিন্তু ব্রিটিশ এবং তাদের মেরুন মিত্রদের কাছে পরাজিত হয়েছিল। ১৭৯৫-৯৬ সালে দ্বিতীয় সংঘর্ষের পর, কাজোউ শহরের (ট্রেলুনি টাউন) মেরুন শহর থেকে অনেক মেরুনকে নোভা স্কোশিয়া এবং পরে সিয়েরা লিওনে বহিষ্কার করা হয়েছিল। অনেক ক্রীতদাস পালিয়ে গিয়েছিল এবং থ্রি-ফিঙ্গার্ড জ্যাক, কাফি এর মতো এবং মি-নো-সেন-ইউ-নো-কামে পালিয়ে যাওয়া দাসদের নেতৃত্বে স্বাধীন সম্প্রদায় গঠন করেছিল। উনিশ শতকের গোড়ার দিকে, জ্যামাইকার ক্রীতদাস শ্রম এবং উপনিবেশ অর্থনীতির উপর নির্ভরশীলতার ফলে কৃষ্ণাঙ্গরা প্রায় ২০:১ এর অনুপাতে শ্বেতাঙ্গদের চেয়ে সংখ্যায় বেশি হয়ে গিয়েছিল। দাসত্ব বিলোপের পরিকল্পনা করার সময়, ব্রিটিশ পার্লামেন্ট দাসদের অবস্থার উন্নতির জন্য আইন পাস করেছিল। সেই আইন অনুযায়ী মালিকদের মাঠে চাবুক ব্যবহার এবং মহিলাদের বেত্রাঘাত নিষিদ্ধ করা হয়েছিল; উপনিবেশ মালিকদের অবহিত করা হয়েছিল যে দাসদের ধর্মীয় শিক্ষার অনুমতি দেওয়া হবে এবং প্রতি সপ্তাহে একটি বিনামূল্যে দিন দিতে হবে যেইদিন ক্রীতদাসরা তাদের পণ্য বিক্রি করতে পারবে।জ্যামাইকার বিধানসভা নতুন আইনগুলি নিয়ে অসন্তুষ্ট প্রকাশ করেছিল এবং এই আইন প্রতিরোধও করেছিল। সদস্যরা তখন সদস্যপদ নিয়ে ইউরোপীয়-জ্যামাইকানদের মধ্যে সীমাবদ্ধ ছিল, তারা দাবি করেছিল যে ক্রীতদাসরা সন্তুষ্টি এবং দ্বীপের বিষয়ে সংসদের হস্তক্ষেপের প্রতিবাদ করেছিল। শর্তগুলি হালকা করা হলে ক্রীতদাস মালিকরা সম্ভাব্য বিদ্রোহের আশঙ্কা করেছিল। ব্রিটিশরা ১৮০৭ সালে দাস ব্যবসা বাতিল করে, কিন্তু প্রতিষ্ঠানটির নিজের জন্য এই আইন প্রযোজ্য ছিল না। ১৮৩১ সালে ব্যাপটিস্ট প্রচারক স্যামুয়েল শার্পের নেতৃত্বে একটি বিশাল ক্রীতদাস বিদ্রোহ শুরু হয়, যা ব্যাপটিস্ট যুদ্ধ নামে পরিচিত। বিদ্রোহের ফলে শত শত মানুষ মারা যায়, অনেক উপনিবেশ ধ্বংস হয় এবং উপনিবেশ শ্রেণী কর্তৃক ভয়াবহ প্রতিশোধ নেওয়া হয়েছিল। এর মতো বিদ্রোহের ফলে এবং বিলোপবাদীদের প্রচেষ্টার ফলে, ব্রিটিশরা ১৮৩৪ সালে তাদের সাম্রাজ্যে দাসত্বকে নিষিদ্ধ করেছিল, ১৮৩৮ সালে ঘোষিত ভূমিদাসত্ব থেকে সম্পূর্ণ মুক্তির দেওয়া হয়েছিল। ১৮৩৪ সালে জনসংখ্যা ছিল ৩,৭১,০৭০ যার মধ্যে ১৫,০০০ ছিল শ্বেতাঙ্গ, ৫,০০০ ছিল মুক্ত কৃষ্ণাঙ্গ; ৪০,০০০ মিশ্রবর্ণ; এবং ৩,১১,০৭০ জন দাস ছিল। ফলে শ্রমিকের অভাবে ব্রিটিশদের শ্রম চাহিদা পরিপূরক করার জন্য চুক্তিভিত্তিক চাকরদের আমদানি শুরু করতে প্ররোচিত করেছিল, কারণ অনেক মুক্তিকামী ব্যক্তিরা উপনিবেশের হয়ে কাজ করার বিরোধিতা করেছিল। ভারত থেকে নিয়োগকৃত শ্রমিকরা ১৮৪৫ সালে এবং ১৮৫৪ সালে চীনা শ্রমিকরা আসতে শুরু করেছিল। অনেক দক্ষিণ এশীয় এবং চীনা বংশধর আজও জ্যামাইকায় বসবাস করছে। ১৮৭১ সালে আদমশুমারিতে ৫,০৬,১৫৪ জন জনসংখ্যা রেকর্ড করা হয়েছিল, যার মধ্যে ২,৪৬,৫৭৩ জন পুরুষ এবং ২,৫৯,৫৮১ জন মহিলা ছিল। তাদের জাতির মধ্যে ১৩,১০১ জন শ্বেতাঙ্গ, ১,০০,৩৪৬ জন মিশ্রবর্ণ (মিশ্রিত কালো এবং সাদা) এবং ৩,৯২,৭০৭ জন কৃষ্ণাঙ্গ হিসাবে রেকর্ড করা হয়েছিল। এই সময়টি অর্থনৈতিক মন্দা দ্বারা চিহ্নিত হয়েছিল, অনেক জ্যামাইকান দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করছিল। এই নিয়ে অসন্তুষ্টি, এবং ক্রমাগত কৃষ্ণাঙ্গ সংখ্যাগরিষ্ঠ জাতিগত বৈষম্য এবং প্রান্তিকীকরণ, যা পল বোগলের নেতৃত্বে ১৮৬৫ সালে মরান্ট বে বিদ্রোহের প্রাদুর্ভাব ঘটায়, যা গভর্নর জন জন আইয়ারের এমন নিষ্ঠুরতার দেখিয়েছিলেন যে তাকে তার অবস্থান থেকে প্রত্যাহার করা হয়েছিল। তার উত্তরসূরি জন পিটার গ্রান্ট, দ্বীপে ব্রিটিশ শাসন বজায় রাখার লক্ষ্যে সামাজিক, আর্থিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের একটি ধারাবাহিক আইন প্রণয়ন করেছিলেন, যা ১৮৬৬ সালে একটি রাজ উপনিবেশে পরিণত হয়। ১৮৭২ সালে রাজধানী স্প্যানিশ টাউন থেকে কিংস্টনে স্থানান্তরিত করা হয়েছিল। বিংশ শতকের প্রথম দিকে ১৯০৭ সালে জ্যামাইকাতে ভয়াবহ ভূমিকম্প হয়েছিল। যার ফলে এটি এবং পরবর্তীতে শহরজুড়ে আগুন লাগার ফলে কিংস্টনে ব্যাপক ক্ষতি হয় এবং প্রায় ৮০০-১০০০ মানুষের মারা গিয়েছিল হয়েছিল। বেকারত্ব এবং দারিদ্র্য অনেক জ্যামাইকানদের জন্য একটি সমস্যা ছিল। রাজনৈতিক পরিবর্তনের জন্য বিভিন্ন আন্দোলন গড়ে ওঠেছিল, যার মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে সার্বজনীন নিগ্রো উন্নয়ন সংঘ ও আফ্রিকান কমিউনিটিস লীগ ১৯১৭ সালে মার্কাস গারভে প্রতিষ্ঠিত করেছিল। বৃহত্তর রাজনৈতিক অধিকার এবং শ্রমিকদের অবস্থার উন্নতি কামনা করার পাশাপাশি গারভে একজন বিশিষ্ট প্যান-আফ্রিকানবাদী এবং আফ্রিকা ফিরে যাওয়া আন্দোলনের প্রবক্তা ছিলেন। তিনি রাস্তাফারির পিছনে অন্যতম প্রধান অনুপ্রেরণা ছিলেন, যা ১৯৩০ দশকে জ্যামাইকায় প্রতিষ্ঠিত একটি ধর্ম যা ইথিওপিয়ার সম্রাট হাইল স্যালেসির চিত্রের উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করে একটি আফ্রোকেন্দ্রিক ধর্মতত্ত্বের সাথে খ্রিস্টধর্মকে সংযুক্ত করেছিল। মাঝে মাঝে নিপীড়ন সত্ত্বেও, রাস্তাফারি দ্বীপে একটি প্রতিষ্ঠিত বিশ্বাস হয়ে ওঠে, পরে বিদেশে ছড়িয়ে পড়ে। ১৯৩০ দশকের মহামন্দা জ্যামাইকাকে আঘাত করেছিল। ১৯৩৪–৩৯ সালে ব্রিটিশ ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান শ্রমিক অস্থিরতার অংশ হিসাবে, জ্যামাইকাতে অসংখ্য ধর্মঘট দেখা দিয়েছিল, যার পরিণতি ১৯৩৮ সালে একটি ধর্মঘট একটি পূর্ণাঙ্গ দাঙ্গায় পরিণত হয়েছিল। ফলস্বরূপ, ব্রিটিশ সরকার ঝামেলার কারণগুলি খতিয়ে দেখতে একটি কমিশন গঠন করে; তাদের প্রতিবেদনে ব্রিটেনের ক্যারিবীয় উপনিবেশগুলিতে রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্কারের সুপারিশ করা হয়েছিল। ১৯৪৪ সালে একটি নতুন প্রতিনিধি পরিষদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল, যা সর্বজনীন প্রাপ্তবয়স্কদের ভোটাধিকার দ্বারা নির্বাচিত হয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে জ্যামাইকার দ্বি-দলীয় ব্যবস্থার উদ্ভব হয়েছিল, আলেকজান্ডার বুস্তামন্তের অধীনে জ্যামাইকান লেবার পার্টি (জেএলপি) এবং নরম্যান ম্যানলির অধীনে পিপলস ন্যাশনাল পার্টি (পিএনপি) গঠিত হয়েছিল। জ্যামাইকা ধীরে ধীরে যুক্তরাজ্য থেকে ক্রমবর্ধমান স্বায়ত্তশাসন লাভ করে। ১৯৫৮ সালে এটি ওয়েস্ট ইন্ডিজ ফেডারেশনের একটি প্রদেশে পরিণত হয়েছিল, যা ব্রিটেনের ক্যারিবীয় উপনিবেশগুলির একটি ফেডারেশন। ফেডারেশনের সদস্যপদ বিভক্তিকর প্রমাণিত হয়েছিল এবং এই বিষয়ে একটি গণভোটে সামান্য সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোট ছাড়তে দেখা গেছে। ফেডারেশন ত্যাগ করার পর, জ্যামাইকা ১৯৬২ সালের ৬ই আগস্ট পূর্ণ স্বাধীনতা লাভ করে। তবে নতুন রাজ্য হিসেবে অবশ্য কমনওয়েলথ অব নেশনসে তার সদস্যপদ বজায় রেখেছে (রানী রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে) এবং ওয়েস্টমিনস্টার-ধাঁচের সংসদীয় পদ্ধতি গ্রহণ করে। বুস্তামন্তে, ৭৮ বছর বয়সে দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। স্বাধীনতা পরবর্তী যুগ শক্তিশালী অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি, যা বার্ষিক গড় প্রায় ৬% ছিল, রক্ষণশীল জেএলপি সরকারের অধীনে স্বাধীনতার প্রথম দশ বছর লক্ষণীয় ছিল; জেএলপির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন পরপর প্রধানমন্ত্রী আলেকজান্ডার বুস্তামান্তে, ডোনাল্ড স্যাংস্টার (যিনি ক্ষমতা গ্রহণের দুই মাসের মধ্যে প্রাকৃতিক কারণে মারা গেছেন) এবং হিউ শিয়ারার। বক্সাইট/অ্যালুমিনা, পর্যটন, উৎপাদন শিল্প এবং কিছুটা হলেও কৃষি খাতে বেসরকারি বিনিয়োগের উচ্চ স্তরের প্রবৃদ্ধি বৃদ্ধি পেয়েছিল। ১৯৬৭ জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে, জেএলপি আবার বিজয়ী হয়, ৫৩টি আসনের মধ্যে ৩৩টিতে জয়লাভ করেছিল, পিএনপি ২০টি আসন পেয়েছিল। পররাষ্ট্রনীতির ক্ষেত্রে জ্যামাইকা জোট নিরপেক্ষ আন্দোলনের সদস্য হয়ে ওঠে এবং ব্রিটেন ও যুক্তরাষ্ট্রের সাথে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখার চেষ্টা করে এবং কিউবার মতো কমিউনিস্ট রাষ্ট্রের সাথেও যোগাযোগ গড়ে তোলে। প্রথম দশকের আশাবাদের সঙ্গে অনেক আফ্রো-জ্যামাইকানদের মধ্যে অসমতার ক্রমবর্ধমান অনুভূতি এবং উদ্বেগ ছিল যে বৃদ্ধির সুফল শহুরে দরিদ্ররা ভাগ করে নিতে পারছিল না, যাদের মধ্যে অনেকেই অপরাধপ্রবণ কিংস্টনের বস্তি-এলাকা বসবাস করছিল। এর মধ্যে নির্বাচনে পিএনপি ৩৭টি আসন এবং জেএলপি ১৬টি আসন জিতেছিল। ম্যানলির সরকার বিভিন্ন সামাজিক সংস্কার, যেমন একটি উচ্চতম ন্যূনতম মজুরি, ভূমি সংস্কার, মহিলাদের সমতার জন্য আইন, বৃহত্তর আবাসন নির্মাণ এবং শিক্ষাগত বিধান বৃদ্ধি ইত্যাদি প্রণয়ন করেছিল। আন্তর্জাতিকভাবে তিনি কমিউনিস্ট গোষ্ঠীর সাথে সম্পর্ক উন্নত করেছিলেন এবং দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণবাদী শাসনের কঠোর বিরোধিতা করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে, পিএনপি ৪৭টি এবং জেএলপি ১৩টি আসনে জয়লাভ করেছিল। যাতে পিএনপি শতকরা ৮৫ ভাগ ভোট পেয়েছিল। যাইহোক, অভ্যন্তরীণ এবং বহিরাগত কারণগুলি যেমন তেলের ধাক্কা ইত্যাদি সংমিশ্রণের কারণে তৎকালীন সময়ের অর্থনীতি ভেঙে পড়েছিল। জেএলপি এবং পিএনপির মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বিতা তীব্র হয়ে ওঠেছিল এবং এই সময়ে রাজনৈতিক এবং সন্ত্রাসী দল-সম্পর্কিত সহিংসতা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছিল। পরিবর্তনের জন্য, জামাইকানরা ১৯৮০ সালে এডওয়ার্ড সিগার অধীনে জেএলপিকে ভোট দিয়েছিল এবং পিএনপি মাত্র নয়টি আসন ও জেএলপি ৫১টি আসন পেয়ে জয়ী হয়েছিল। দৃঢ়ভাবে কমিউনিস্ট বিরোধী, সিগা কিউবার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করেছিল এবং ১৯৮৩ সালে গ্রেনাডায় মার্কিন আক্রমণকে সমর্থন করার জন্য সৈন্য পাঠিয়েছিল। অর্থনৈতিক অবনতি অবশ্য ১৯৮০ দশকের মাঝামাঝি পর্যন্ত অব্যাহত ছিল, যা বেশ কয়েকটি কারণের কারণে বেড়ে গিয়েছিল। ক্রমবর্ধমান বৈদেশিক ও স্থানীয় ঋণের কারণে, বড় আর্থিক ঘাটতি সহ সরকার আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) অর্থায়ন চেয়েছিল, যা বিভিন্ন কঠোরতা ব্যবস্থা বাস্তবায়নের উপর নির্ভরশীল ছিল। এর ফলে ১৯৮৫ সালে ধর্মঘট হয়েছিল এবং সিগা সরকারের প্রতি সমর্থন কমে গিয়েছিল, যা ১৯৮৮ সালের হারিকেন গিলবার্ট দ্বারা সৃষ্ট ধ্বংসযজ্ঞের প্রতি সরকারের প্রতিক্রিয়ার সমালোচনার কারণে তা আরো বেড়ে গিয়েছিল। পরে সমাজতন্ত্রের উপর জোর দিয়ে এবং আরো কেন্দ্রীয় অবস্থান গ্রহণ করে, মাইকেল ম্যানলি এবং পিএনপি ১৯৮৯ সালে ৪৫টি আসন পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হয়েছিলেন। উক্ত নির্বাচনে জেএলপি ১৫টি আসন পেয়েছিল পিএনপি প্রধানমন্ত্রী মাইকেল ম্যানলি (১৯৮৯-১৯৯২), পি. জে. প্যাটারসন (১৯৯২-২০০৫) এবং পোর্টিয়া সিম্পসন-মিলার (২০০৫-২০০৭) এর অধীনে একাধিক নির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন। ১৯৯৩ সালের জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে, প্যাটারসন পিএনপিকে বিজয়ের দিকে নিয়ে গিয়েছিলেন, যেখানে জেএলপি আটটি আসন এবং পিএনপি ৫২টি আসন পেয়ে জয়লাভ করেছিল। প্যাটারসন ১৯৯৭ সালের জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে জেএলপির ১০ টি আসন বনাম পিএনপির ৫০টি আসনের আরেকটি বিশাল ব্যবধানে জিতেছিলেন। ২০০২ সালের জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে প্যাটারসনের টানা তৃতীয় বিজয় এসেছিল এবং পিএনপি ক্ষমতা ধরে রেখেছিল, কিন্তু আসন সংখ্যাগরিষ্ঠতা কমে ৩৪ টি আসন থেকে ২৬টি আসনে নেমে এসেছিল। ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০০৬ সালে প্যাটারসন পদত্যাগ করেছিলেন এবং তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন পোর্টিয়া সিম্পসন-মিলার, যিনি জ্যামাইকার প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী। এই সময়ের মধ্যে ভোটের হার ধীরে ধীরে হ্রাস পেয়েছিল, যা ১৯৯৩ সালে ৬৭.৪% থেকে ২০০২ সালে ৫৯.১% গিয়ে দাঁড়িয়েছিল। এই সময়ের মধ্যে বিভিন্ন অর্থনৈতিক সংস্কার চালু করা হয়েছিল যেমন অর্থ খাতকে নিয়ন্ত্রণহীন করেছিল এবং নির্দলীয় জ্যামাইকান ডলার প্রবর্তনের পাশাপাশি অবকাঠামোতে অধিক বিনিয়োগ, যখন একটি শক্তিশালী সামাজিক সুরক্ষা জাল বজায় রেখেছিল। রাজনৈতিক সহিংসতা, যা আগের দুই দশকে অনেক বেশি ছিল, উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছিল। ২০০৭ সালে পিএনপি জেএলপির কাছে ৩২টি আসনের বিপরীতে ২৮টি আসন পেয়ে অল্প ব্যবধানে পরাজিত হয়েছিল, যার ভোটদান ৬১.৪৬ শতাংশে পৌঁছেছিল। উক্ত নির্বাচনের ফলে পিএনপির ১৮ বছর শাসনের ইতি ঘটেছিল এবং ব্রুস গোল্ডিং নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছিলেন। গোল্ডিংয়ের মেয়াদ (২০০৭–২০১০) বিশ্ব মন্দার প্রভাব দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল, পাশাপাশি জ্যামাইকান পুলিশ এবং সামরিক বাহিনী ২০১০ সালে মাদক সম্রাট ক্রিস্টোফার কোককে গ্রেফতারের প্রচেষ্টার ফলে সারা দেশজুড়ে সহিংসতায় ছড়িয়ে পড়েছিল, যার ফলে ৭০ জনেরও বেশি মানুষ মারা গিয়েছিল। এই ঘটনার ফলে গোল্ডিং পদত্যাগ করেছিলেন এবং ২০১১ সালে অ্যান্ড্রু হলনেস তার স্থলাভিষিক্ত হয়েছিলেন। যদিও জ্যামাইকায় ব্যাপকভাবে উদযাপিত স্বাধীনতা একবিংশ শতাব্দীর শুরুতে প্রশ্নবিদ্ধ হয়েছিল। ২০১১ সালের একটি জরিপ দেখিয়েছিল যে প্রায় ৬০% জ্যামাইকান বিশ্বাস করে যে ব্রিটিশ উপনিবেশ থাকলে দেশটি আরও ভাল হতো, মাত্র ১৭% বিশ্বাস করে যে এটি আরও খারাপ হতে পারে কারণ বছরের পর বছর সামাজিক ও আর্থিক অব্যবস্থাপনার সমস্যা হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছিল। যাইহোক, এই জরিপ জেএলপির অপরাধ ও অর্থনীতি পরিচালনার প্রতি আরও বেশি অসন্তোষ প্রতিফলিত করেছিল এবং ফলস্বরূপ, হলনেস ও জেএলপি ২০১১ জ্যামাইকান সাধারণ নির্বাচনে পরাজিত হয়েছিল, যা পোর্টিয়া সিম্পসন-মিলার ও পিএনপিকে ক্ষমতায় ফিরে নিয়ে এসেছিল। আসন সংখ্যা বাড়িয়ে ৬৩ করা হয়েছিল এবং পিএনপি ৪২টি আসন ও জেএলপি ২১ টি আসন পেয়ে পিএনপি ক্ষমতায় এসেছিল। ভোটার উপস্থিতি ছিল ৫৩.১৭%। হলনেসের জেএলপি ২৫ ফেব্রুয়ারি সিম্পসন-মিলারের পিএনপিকে পরাজিত করেছিল এবং ২০১৬ সালের সাধারণ নির্বাচনে জয়লাভ করেছিল। পিএনপি ৩১টি আসন এবং জেএলপি ৩২টি আসন পেয়ে নির্বাচন জিতেছিল। ফলস্বরূপ, সিম্পসন-মিলার দ্বিতীয়বারের মতো বিরোধী দলীয় নেতা হয়েছিলেন। প্রথমবারের মতো ভোটারদের উপস্থিতি ৫০% নিচে নেমেছিল, যা মাত্র ৪৮.৩৭% ছিল। ২০২০ সালের সাধারণ নির্বাচনে, অ্যান্ড্রু হলনেস জ্যামাইকার লেবার পার্টির জন্য টানা দ্বিতীয় জয়লাভ করে জেএলপির জন্য ইতিহাস সৃষ্টি করেছিলেন, যেখানে জেএলপি ৪৯টি আসন এবং পিটার ফিলিপস নেতৃত্বাধীন পিএনপি ১৪টি আসন জিতেছিল। জেএলপির জন্য সর্বশেষ পর পর জয় ১৯৮০ সালে হয়েছিল। যাইহোক, এই নির্বাচনে ভোটার মাত্র ৩৭% ছিল, যা সম্ভবত করোনাভাইরাস মহামারী দ্বারা প্রভাবিত হয়েছিল। সরকার এবং রাজনীতি জ্যামাইকা একটি সংসদীয় গণতন্ত্র এবং সাংবিধানিক রাজতন্ত্রের মাধ্যমে পরিচালিত হয়। জ্যামাইকার রাষ্ট্রপ্রধান হলেন জ্যামাইকার রানী (বর্তমানে দ্বিতীয় এলিজাবেথ); তিনি জ্যামাইকার গভর্নর জেনারেল স্থানীয়ভাবে প্রতিনিধিত্ব করেন। গভর্নর-জেনারেল জ্যামাইকার প্রধানমন্ত্রী এবং সমগ্র মন্ত্রিসভা দ্বারা মনোনীত হন এবং তারপর আনুষ্ঠানিকভাবে রানী দ্বারা নিযুক্ত হন। মন্ত্রিসভার সকল সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীর পরামর্শে গভর্নর-জেনারেল কর্তৃক নিযুক্ত হয়। রানী এবং গভর্নর-জেনারেল কিছু সাংবিধানিক সংকট পরিস্থিতিতে ব্যবহারের জন্য তাদের সংরক্ষিত ক্ষমতা ছাড়াও বেশিরভাগ আনুষ্ঠানিক ভূমিকা পালন করে। রানীর অবস্থান অনেক বছর ধরে জ্যামাইকায় অব্যাহত থাকা নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছিল এবং বর্তমানে উভয় প্রধান রাজনৈতিক দল একটি রাষ্ট্রপতির সাথে একটি প্রজাতন্ত্রে রূপান্তরের জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। জ্যামাইকার বর্তমান সংবিধান ১৯৬২ সালে জ্যামাইকার আইনসভার দ্বিপক্ষীয় যৌথ কমিটি দ্বারা খসড়া করা হয়েছিল। এটি যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টের জ্যামাইকা স্বাধীনতা আইন, ১৯৬২ দিয়ে কার্যকর করা হয়েছিল, যা জ্যামাইকাকে স্বাধীন রাষ্ট্র হিসাবে পরিচিতি দিয়েছিল। জ্যামাইকার পার্লামেন্ট দ্বি-কক্ষবিশিষ্ট, যা প্রতিনিধি পরিষদ বা হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভ (নিম্নকক্ষ) এবং সেনেট (উচ্চকক্ষ) নিয়ে গঠিত। প্রতিনিধি পরিষদের সদস্যরা (সংসদ সদস্য বা এমপি হিসেবে পরিচিত) সরাসরি নির্বাচিত হন এবং প্রতিনিধি পরিষদের সদস্য, যারা গভর্নর-জেনারেলের সর্বোত্তম রায়ে, সেই সংখ্যাগরিষ্ঠ সদস্যের আস্থা অর্জনে সবচেয়ে ভালো প্রতিনিধি, গভর্নর-জেনারেল দ্বারা প্রধানমন্ত্রী হওয়ার জন্য নিযুক্ত করা হয়। সিনেটরদের প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধীদলীয় সংসদ নেতা যৌথভাবে মনোনীত করেন এবং তারপর গভর্নর-জেনারেল দ্বারা নিযুক্ত হন। জ্যামাইকার বিচার বিভাগ ইংরেজ আইন এবং কমনওয়েলথ অফ নেশনসের নজির থেকে উদ্ভূত একটি সাধারণ আইন ব্যবস্থায় কাজ করে। রাজনৈতিক দল এবং নির্বাচন জ্যামাইকায় ঐতিহ্যগতভাবে একটি দ্বি-দলীয় ব্যবস্থা আছে, যার ক্ষমতা প্রায়ই পিপলস ন্যাশনাল পার্টি (পিএনপি) এবং জ্যামাইকা লেবার পার্টির (জেএলপি) মধ্যে পরিবর্তিত হয়। ২০২০ সালের নির্বাচনে বিজয়ের পর বর্তমান প্রশাসনিক এবং আইনী ক্ষমতার অধিকারী দলটি হল জ্যামাইকা লেবার পার্টি। এছাড়াও বেশ কিছু ছোট দল আছে যারা এখনো সংসদে আসন লাভ করতে পারেনি; এর মধ্যে সবচেয়ে বড় দল হল ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক মুভমেন্ট (এনডিএম)। সামরিক জ্যামাইকা ডিফেন্স ফোর্স (জেডিএফ) হল ছোট কিন্তু পেশাদার সামরিক বাহিনী। জেডিএফ ব্রিটিশ সামরিক মডেলের উপর ভিত্তি করে একই ধরনের সংগঠন, প্রশিক্ষণ, অস্ত্র এবং ঐতিহ্য নিয়ে গঠিত হয়েছিল। জেডিএফ সরাসরি ব্রিটিশ উপনিবেশ যুগে গঠিত ব্রিটিশ সেনাবাহিনীর ওয়েস্ট ইন্ডিয়া রেজিমেন্ট থেকে এসেছে। জ্যামাইকা ডিফেন্স ফোর্স (জেডিএফ) একটি পদাতিক রেজিমেন্ট এবং রিজার্ভ কর্পস, একটি এয়ার উইং, একটি কোস্টগার্ড বহর এবং একটি সহায়ক ইঞ্জিনিয়ারিং ইউনিট নিয়ে গঠিত। পদাতিক রেজিমেন্টে ১ম, ২য় ও ৩য় (ন্যাশনাল রিজার্ভ) ব্যাটালিয়ন রয়েছে। জেডিএফ এয়ার উইং তিনটি ফ্লাইট ইউনিট, একটি ট্রেনিং ইউনিট, একটি সাপোর্ট ইউনিট এবং জেডিএফ এয়ার উইং (ন্যাশনাল রিজার্ভ) -এ বিভক্ত আছে। কোস্টগার্ড সমুদ্রগামী ক্রু এবং সাপোর্ট ক্রুদের মধ্যে বিভক্ত যারা সামুদ্রিক নিরাপত্তা এবং সামুদ্রিক আইন প্রয়োগের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা-সম্পর্কিত কার্যক্রম পরিচালনা করে। অন্যদিকে সাপোর্ট ব্যাটালিয়নের ভূমিকা হল যুদ্ধে সংখ্যা বাড়ানোর জন্য সহায়তা প্রদান করা এবং বাহিনীর প্রস্তুতি গ্রহণের জন্য যোগ্যতা প্রশিক্ষণ প্রদান করা। সামরিক ইঞ্জিনিয়ারদের বর্ধিত চাহিদার কারণে ১ম ইঞ্জিনিয়ার রেজিমেন্ট গঠিত হয়েছিল এবং তাদের ভূমিকা যখন এবং যেখানে প্রয়োজন সেখানে ইঞ্জিনিয়ারিং সেবা প্রদান করা। জেডিএফের সদর দপ্তরে জেডিএফ কমান্ডার, কমান্ড স্টাফের পাশাপাশি গোয়েন্দা, জজ অ্যাডভোকেট অফিস, প্রশাসনিক ও ক্রয় বিভাগ রয়েছে। ২০১৭ সালে, জ্যামাইকা জাতিসংঘের পারমাণবিক অস্ত্র নিষিদ্ধকরণ চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছিল। প্রশাসনিক বিভাগ জ্যামাইকা ১৪টি প্যারিশে বিভক্ত, যা তিনটি ঐতিহাসিক বিভাগতে বিভক্ত যেগুলির কোন প্রশাসনিক প্রাসঙ্গিকতা নেই। স্থানীয় সরকারের পরিপ্রেক্ষিতে প্যারিশগুলিকে "স্থানীয় কর্তৃপক্ষ" হিসাবে মনোনীত করা হয়। এই স্থানীয় কর্তৃপক্ষগুলিকে আবার "পৌরনিগম" বলা হয়ে থাকে, যা হয় নগর পৌরসভা বা শহর পৌরসভা। আইনসম্মতভাবে যে কোন নতুন নগর পৌরসভার কমপক্ষে ৫০,০০০ জনসংখ্যা থাকতে হবে এবং স্থানীয় সরকার মন্ত্রীর দ্বারা নির্ধারিত একটি শহর পৌরসভা থাকতে হবে। কিন্তু জ্যামাইকাতে বর্তমানে কোন শহর পৌরসভা নেই। কিংস্টন এবং সেন্ট অ্যান্ড্রুজের প্যারিশের স্থানীয় সরকারগণ কিংস্টন এবং সেন্ট অ্যান্ড্রু পৌরনিগমকে নগর পৌরসভা হিসাবে একত্রিত করেছিল। ২০০৩ সালে গঠন করা পোর্টমোর পৌরসভা হল জ্যামাইকার নতুন নগর পৌরসভা। যদিও এটি ভৌগোলিকভাবে সেন্ট ক্যাথরিনের প্যারিশের মধ্যে অবস্থিত, তবে এটি স্বাধীনভাবে পরিচালিত হয়। ভূগোল এবং পরিবেশ জ্যামাইকা ক্যারিবীয় অঞ্চলের তৃতীয় বৃহত্তম দ্বীপ। এটি ১৭° ও ১৯° উত্তর অক্ষাংশ এবং ৭৬° ও ৭৯° পশ্চিম দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। জ্যামাইকার পর্বতগুলি এর অভ্যন্তরে আধিপত্য বিস্তার করে, যেমন পশ্চিমে ডন ফিগুয়েরো, সান্তা ক্রুজ এবং মে ডে পর্বত, কেন্দ্রে ড্রাই হারবার পর্বত এবং পূর্বে জন ক্রো পর্বত এবং ব্লু পর্বত, এর পরে ব্লু পর্বতের চূড়া, যা জ্যামাইকার সবচেয়ে উঁচু পর্বত এবং এটি সমুদ্রপৃষ্ঠ হতে ২,২৫৬ মিটার উঁচু। এইসব পর্বতমালা একটি সরু উপকূলীয় সমভূমি দ্বারা বেষ্টিত। জ্যামাইকার কেবল দুটি প্রধান শহর আছে, প্রথমটি হল কিংস্টন, যা জ্যামাইকার রাজধানী শহর ও ব্যবসার কেন্দ্র এবং এটি জ্যামাইকার দক্ষিণ উপকূলে অবস্থিত। দ্বিতীয়টি হল মন্টেগো বে, যা মূলত পর্যটনের জন্য ক্যারিবীয় অঞ্চলের অন্যতম জনপ্রিয় শহর এবং এটি জ্যামাইকার উত্তর উপকূলে অবস্থিত। কিংস্টন পোতাশ্রয় পৃথিবীর সপ্তম বৃহত্তম প্রাকৃতিক বন্দর, যা ১৮৭২ সালে শহরটিকে রাজধানী হিসেবে নির্বাচন করতে অবদান রেখেছিল। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য শহরগুলির মধ্যে রয়েছে পোর্টমোর, স্প্যানিশ টাউন, সাভানা লা মার, ম্যান্ডেভিল এবং অবসর বিনোদনের শহর যেমন ওচো রিওস, পোর্ট আন্তোনিও এবং নেগ্রিল। পোর্ট রয়েল, ১৬৯২ সালে এই স্থানে একটি বড় ভূমিকম্পে এই দ্বীপের প্যালিসাডো বালির বার গঠনে সহায়তা করেছিল। স্থলজগত, জলজ ও সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের মধ্যে শুষ্ক ও ভেজা চুনাপাথরের বন, রেইন ফরেস্ট, তীরবর্তী বনভূমি, জলাভূমি, গুহা, নদী, সামুদ্রিক ঘাস এবং প্রবাল প্রাচীর অন্যতম। জ্যামাইকার কর্তৃপক্ষ পরিবেশের অসাধারণ তাৎপর্য এবং সম্ভাবনাকে স্বীকৃতি দিয়েছিল এবং আরো কিছু "উর্বর" অঞ্চলকে "সুরক্ষিত" হিসেবে মনোনীত করেছিল। দ্বীপের সুরক্ষিত এলাকাগুলির মধ্যে রয়েছে ককপিট কান্ট্রি, হেলশায়ার পাহাড় এবং লিচফিল্ড সংরক্ষিত বনভূমি। ১৯৯২ সালে, জ্যামাইকার প্রথম সামুদ্রিক পার্ক, যা প্রায় ১৫ বর্গ কিলোমিটার (৫.৮ বর্গ মাইল) জুড়ে, মন্টেগো উপসাগরে তৈরি করা হয়েছিল। পোর্টল্যান্ড উপসাগর সুরক্ষিত এলাকা ১৯৯৯ সালে মনোনীত হয়েছিল। পরের বছর ব্লু এবং জন ক্রো মাউন্টেনস ন্যাশনাল পার্ক তৈরি করা হয়েছিল, যা প্রায় ৩০০ বর্গ মাইল (৭৮০ কিমি২) একটি উপবন এলাকা জুড়ে যা কয়েক হাজার গাছ এবং ফার্ন প্রজাতি এবং বিরল প্রাণীদের সহায়তা করে। জ্যামাইকার উপকূলে বেশ কয়েকটি ছোট ছোট দ্বীপ রয়েছে, বিশেষ করে পোর্টল্যান্ড উপসাগরে যেমন পিজিওন দ্বীপ, সল্ট দ্বীপ, ডলফিন দ্বীপ, লং দ্বীপ, গ্রেট গোট দ্বীপ এবং লিটল গোট দ্বীপ এবং আরও পূর্বে অবস্থিত লাইম প্রবালপ্রাচীর। অনেক দূরে, দক্ষিণ উপকূল থেকে প্রায় ৫০-৮০ কিমি দূরে খুব ছোট মোরান্ট প্রবালপ্রাচীর এবং পেড্রো প্রবালপ্রাচীর অবস্থিত। জলবায়ু জ্যামাইকার জলবায়ু উষ্ণ এবং গ্রীষ্মমণ্ডলীয় আর্দ্র আবহাওয়া বিদ্যমান, যদিও অপেক্ষাকৃত উঁচু অভ্যন্তরীণ অঞ্চলগুলি নাতিশীতোষ্ণ। দক্ষিণ উপকূলের কিছু অঞ্চল, যেমন লিগুয়ানিয়া সমভূমি এবং পেড্রো সমভূমি তুলনামূলকভাবে শুষ্ক বৃষ্টিচ্ছায় এলাকা। জ্যামাইকা আটলান্টিক মহাসাগরের হারিকেন অঞ্চলে অবস্থিত এবং এর কারণে দ্বীপটি মাঝে মধ্যে উল্লেখযোগ্য ঝড়ের ক্ষতির সম্মুখীন হয়। হারিকেন চার্লি এবং গিলবার্ট যথাক্রমে ১৯৫১ এবং ১৯৮৮ সালে জ্যামাইকাতে আঘাত হেনেছিল, যার ফলে বড় ক্ষতি হয়েছিল এবং অনেক মানুষ মারা গিয়েছিল। ২০০০ দশকে, হারিকেন ইভান, ডিন এবং গুস্তাভ দ্বীপে গুরুতর আবহাওয়া নিয়ে এসেছিল। উদ্ভিদ ও প্রাণীজগত জ্যামাইকার গ্রীষ্মমণ্ডলীয় জলবায়ু উদ্ভিদ এবং প্রাণীর সম্পদ সহ বিভিন্ন বাস্তুতন্ত্রকে সমর্থন করে। জ্যামাইকার উদ্ভিদ জীবন শতাব্দী ধরে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তিত হয়েছে; ১৪৯৪ সালে যখন স্পেনীয়রা এসেছিল, ছোট কৃষি পরিষ্কারকরণ ছাড়া, দেশটি গভীরভাবে বন-জঙ্গলে ঘেরা ছিল। ইউরোপীয় বসতি স্থাপনকারীরা দালান এবং জাহাজের কাঠামো সরবরাহের জন্য বিশাল কাঠের গাছ কেটে ফেলতো এবং কৃষি চাষের জন্য অনেক সমতল, বৃক্ষহীন তৃণভূমি এবং পাহাড়ের ঢাল পরিষ্কার করেছিল। আখ, কলা, এবং সাইট্রাস গাছ সহ অনেক নতুন উদ্ভিদ এই দ্বীপে পরিচয় করা হয়েছিল। জ্যামাইকায় প্রায় ৩,০০০ প্রজাতির দেশীয় সপুষ্পক উদ্ভিদ রয়েছে (যার মধ্যে ১,০০০ এরও বেশি স্থানীয় এবং ২০০ টি অর্কিডের প্রজাতি),হাজারখানেক প্রজাতির অ-ফুল উদ্ভিদ এবং প্রায় ২০টি উদ্ভিদ উদ্যান, যার মধ্যে কয়েকটি শত বছরের পুরনো। ভারী বৃষ্টিপাতের এলাকায় বাঁশ, ফার্ন, আবলুস, মেহগনি এবং রোজউডের গাছ পাওয়া যায়। ক্যাকটাস এবং অনুরূপ শুষ্ক অঞ্চলের গাছপালা দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে পাওয়া যায়। পশ্চিম ও দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের অঞ্চলগুলি বড় তৃণভূমি নিয়ে গঠিত, যেখানে গাছের বিক্ষিপ্ত উপস্থিতি রয়েছে। জ্যামাইকায় তিনটি স্থলীয় বাস্তুসংস্থান, জ্যামাইকান আর্দ্র বন, জ্যামাইকান শুকনো বন এবং বৃহত্তর অ্যান্টিলেস ম্যানগ্রোভ রয়েছে। এটি ২০১৯ সালে ফরেস্ট ল্যান্ডস্কেপ ইন্টিগ্রিটি ইনডেক্সের গড় স্কোর ৫.০১/১০ ছিল, যা ১৭২টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ১১০ তম স্থান পেয়েছে। জ্যামাইকার প্রাণীকুলের মধ্যে বেশিরভাগ ক্যারিবীয় প্রজাতির, তবে অনেক স্থানীয় প্রজাতির সঙ্গে অত্যন্ত বৈচিত্র্যময় বন্যপ্রাণীও বাস করে। অন্যান্য মহাসাগরীয় দ্বীপের মতো, স্থল স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে বেশিরভাগ বাদুড়ের বিভিন্ন প্রজাতি যার মধ্যে কমপক্ষে তিনটি স্থানীয় প্রজাতি যা শুধুমাত্র ককপিট প্রদেশে পাওয়া যায়, যার মধ্যে একটি ঝুঁকিপূর্ণ। বাদুড়ের অন্যান্য প্রজাতির মধ্যে রয়েছে ডুমুর-খাওয়া বাদুড় এবং লোমসহ লেজযুক্ত বাদুড়। জ্যামাইকায় একমাত্র বাদুড় নয় এমন স্থানীয় স্তন্যপায়ী প্রাণী হল জ্যামাইকান হুটিয়া, যা স্থানীয়ভাবে শঙ্কু() নামে পরিচিত। প্রবর্তিত স্তন্যপায়ী প্রাণীদের মধ্যে বন শুকর এবং ছোট এশিয় বেজি অন্যতম। জ্যামাইকাতে প্রায় ৫০ প্রজাতির সরীসৃপের বাসস্থান, যার মধ্যে সবচেয়ে বড় হল আমেরিকান কুমির, এটি শুধুমাত্র ব্ল্যাক নদী এবং অন্যান্য কয়েকটি এলাকায় পাওয়া যায়। টিকটিকির মধ্যে অ্যানোলস, ইগুয়ানা প্রজাতি এবং সাপের বিভিন্ন প্রজাতির মধ্যে রেসার এবং জ্যামাইকান বোয়া (দ্বীপের সবচেয়ে বড় সাপ) অন্যতম, যা ককপিট প্রদেশের মতো এলাকায় সাধারণত পাওয়া যায়। জ্যামাইকার আট প্রজাতির স্থানীয় প্রজাতির সাপের কোনোটিই বিষাক্ত নয়। জ্যামাইকায় প্রায় ২৮৯ প্রজাতির পাখি রয়েছে যার মধ্যে ২৭টি বিপন্ন কালো ঠোটযুক্ত তোতাপাখি এবং জ্যামাইকান ব্ল্যাকবার্ড এবং এই দুইটি পাখি শুধু ককপিট প্রদেশে পাওয়া যায়। এটি হামিংবার্ডের চারটি প্রজাতির আদি বাসস্থান (যার মধ্যে তিনটি বিশ্বের অন্য কোথাও পাওয়া যায় না): কালো ঠোটযুক্ত স্ট্রিমারটেল, জ্যামাইকান ম্যঙ্গো, ভেরভেইন হামিংবার্ড এবং লাল ঠোটযুক্ত স্ট্রিমারটেল। লাল ঠোটযুক্ত স্ট্রিমারটেল, যা স্থানীয়ভাবে "ডাক্তার পাখি" নামে পরিচিত, এটি জ্যামাইকার জাতীয় প্রতীক হিসাবে গণ্য করা হয়। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য প্রজাতির মধ্যে রয়েছে জ্যামাইকান টডি এবং বড় ফ্লেমিঙ্গো। মিঠা পানির কচ্ছপের মধ্যে একটি জ্যামাইকার স্থানীয় প্রজাতি হল জ্যামাইকান স্লাইডার। এটি শুধুমাত্র জ্যামাইকা এবং বাহামা দ্বীপপুঞ্জের কয়েকটি দ্বীপে পাওয়া যায়। এছাড়াও দ্বীপে অনেক ধরনের ব্যাঙ পাওয়া যায়, তাদের মধ্যে গাছব্যাঙ অন্যতম। জ্যামাইকার জলজ উৎসে মিঠা এবং লোনা পানির মাছের যথেষ্ট মৎস্য সম্পদ আছে। লোনা পানির মাছের প্রধান জাতগুলোর মধ্যে কিংফিশ, জ্যাক, ম্যাকেরেল, হোয়াইটিং, বনিটো এবং টুনা অন্যতম। মাছ যা মাঝে মাঝে মিঠা পানিতে প্রবেশ করে এবং মোহনার পরিবেশের মধ্যে রয়েছে স্নুক, জিউফিশ, ম্যানগ্রোভ স্ন্যাপার এবং মাললেট। জ্যামাইকার মিঠাপানির যেসব মাছ রয়েছে তাদের মধ্যে রয়েছে লাইভবিয়্যার্সের অনেক প্রজাতি, কিলিফিশ, মিঠা পানির গোবি, মাউন্টেন্ট মাললেট এবং আমেরিকান ঈল অন্যতম। তেলাপিয়া আফ্রিকা থেকে এনে পুকুর চাষের জন্য চালু করা হয়েছিল যা এখন স্থানীয়দের মাঝে সাধারণ হয়ে গেছে। জ্যামাইকার তীরবর্তী অঞ্চলে ডলফিন, প্যারোট মাছ এবং বিপন্ন সমুদ্রগাভী দেখা যায়। পোকামাকড় এবং অন্যান্য অমেরুদণ্ডী প্রাণী জ্যামাইকাতে প্রচুর পরিমাণে রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে বিশ্বের বৃহত্তম শতপদী(), যেমন আমাজনের বড় শতপদী। জ্যামাইকায় প্রায় ১৫০ প্রজাতির প্রজাপতি এবং পতঙ্গের বাসস্থান, যার মধ্যে ৩৫টি দেশীয় প্রজাতি এবং ২২টি উপ-প্রজাতি রয়েছে। এটি পশ্চিম গোলার্ধের বৃহত্তম প্রজাপতি জ্যামাইকান সোয়েলটেইলের আদি নিবাস। জলজ জীবন প্রবালপ্রাচীর বাস্তুতন্ত্রগুলি গুরুত্বপূর্ণ কারণ তারা মানুষকে জীবিকা, খাদ্য, বিনোদন এবং ঔষধি যৌগের উৎস প্রদান করে এবং বাসভূমিকে রক্ষা করে। জ্যামাইকা তার উন্নয়নের জন্য সাগর এবং সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রের উপর নির্ভর করে। তবে জ্যামাইকার সামুদ্রিক জীবন প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এমন অনেক কারণ থাকতে পারে যা সামুদ্রিক জীবনযাত্রায় অবদান রাখে কিন্তু তা প্রতিনিয়ত ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। জ্যামাইকার ভূতাত্ত্বিক উৎপত্তি, ভূসংস্থান-সংক্রান্ত বৈশিষ্ট্য এবং ঋতুভিত্তিক উচ্চ বৃষ্টিপাত যা উপকূলীয় এবং মহাসাগরীয় পরিবেশকে প্রভাবিত করতে পারে এমন প্রাকৃতিক বিপদের একটি সীমার জন্য সংবেদনশীল করে তোলে। এর মধ্যে রয়েছে ঝড় ঢেউ, ঢাল বিপর্যয় (ভূমিধস), ভূমিকম্প, বন্যা এবং হারিকেন। জ্যামাইকার নেগ্রিল মেরিন পার্ক (এনএমপি) -তে প্রবাল প্রাচীরগুলি প্রধানত পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে কয়েক দশকের নিবিড় বিকাশের পর পুষ্টি দূষণ এবং ম্যাক্রোয়ালগল ফুল দ্বারা ক্রমবর্ধমানভাবে প্রভাবিত হয়েছে। আরেকটি কারণের মধ্যে পর্যটন অন্তর্ভুক্ত হতে পারে: যেহেতু জ্যামাইকা একটি খুব পর্যটন স্থান, দ্বীপটি সারা বিশ্ব থেকে এখানে ভ্রমণকারী অসংখ্য মানুষকে আকর্ষণ করে। জ্যামাইকার পর্যটন শিল্প মোট কর্মসংস্থানের ৩২% এবং দেশের জিডিপির ৩৬% এবং এটি মূলত সূর্যের আলো, সমুদ্র ও বালির উপর ভিত্তি করে, এই দুটি বৈশিষ্ট্য সুস্থ প্রবাল প্রাচীর বাস্তুতন্ত্রের উপর নির্ভরশীল। জ্যামাইকার পর্যটনের কারণে, তারা পর্যটক তাদের সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্র পরিচালনার জন্য আর্থিকভাবে সাহায্য করতে ইচ্ছুক কিনা তা দেখার জন্য একটি গবেষণা তৈরি করেছে কারণ জ্যামাইকা একা বাস্তুতন্ত্র পরিচালনা করার জন্য অক্ষম। জ্যামাইকা একটি বিশেষ পর্যটন স্থান বিশেষত তাদের সৈকতের কারণে। যদি পার্শ্ববর্তী মহাসাগরগুলি তাদের সর্বোত্তমভাবে কাজ না করে তবে জ্যামাইকা এবং সেখানে বসবাসকারী লোকদের কল্যাণ অবনতি হতে শুরু করবে। ওইসিডি অনুসারে, সামগ্রিক অর্থনীতিতে মহাসাগরগুলি মূল্য সংযোজন করতে বছরে ১.৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার অবদান রাখে। একটি উন্নয়নশীল দ্বীপরাষ্ট্র হিসাবে জ্যামাইকা তাদের মহাসাগর থেকে তাদের রাজস্বের সিংহভাগ পাবে। দূষণ দূষণ মূলত আসে জলযুক্ত নালা, নর্দমার ময়লা জল এবং আবর্জনা থেকে। যাইহোক, সাধারণত বৃষ্টি বা বন্যার পরে এই সব সমুদ্রে প্রবাহিত হয়। জলে শেষ হওয়া সবকিছুই সমুদ্রের গুণমান এবং ভারসাম্য পরিবর্তন করে। উপকূলীয় পানির নিম্ন মান মৎস্য, পর্যটন এবং কৃষিকাজের উপর বিরূপ প্রভাব ফেলে, সেইসাথে সমুদ্র ও উপকূলীয় আবাসস্থলের জীব সম্পদের জৈবিক স্থিতিশীলতা হ্রাস করে ও বাস্তুতন্ত্রের ক্ষতিসাধন করে। জ্যামাইকা তাদের জলপথের মাধ্যমে অনেক পণ্য আমদানি ও রপ্তানি করে। জ্যামাইকায় যেসব আমদানি হয় তার মধ্যে রয়েছে পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোলিয়ামজাত পণ্য। সমুদ্রে দুর্ঘটনার কারণে নানাবিধ সমস্যার সৃষ্টি হয়, যেমন পেট্রোলিয়াম এবং পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যগুলি স্থানীয় এবং আন্তর্জাতিক পরিবহনের মাধ্যমে সমুদ্রপৃষ্ঠে ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থেকে যায়। তেল ছড়িয়ে পরার ফলে সামুদ্রিক বিভিন্ন জীবের জীবন রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে ব্যাহত হতে পারে। জ্যামাইকায় অন্যান্য ধরনের দূষণও ঘটে। জ্যামাইকার কঠিন বর্জ্য নিষ্কাশন প্রক্রিয়া বর্তমানে অপর্যাপ্ত অবস্থায় আছে। বর্জ্য শক্তির মাধ্যমে কঠিন বর্জ্য পানিতে প্রবেশ করে। কঠিন বর্জ্য বিভিন্ন প্রাণীর জন্য ক্ষতিকর, বিশেষ করে পাখি, মাছ এবং কচ্ছপ যা পানির পৃষ্ঠে খাওয়ার এবং খাদ্যের জন্য ভাসমান ধ্বংসাবশেষ হিসাবে ভুল করে। উদাহরণস্বরূপ, পাখি এবং কচ্ছপের ঘাড়ের চারপাশে প্লাস্টিক ধরা যেতে পারে যা খাওয়া এবং তাদের শ্বাস নিতে কষ্টের কারণ হতে পারে। কারণ তারা বাড়তে শুরু করলে, প্লাস্টিক তাদের গলায় শক্ত হয়ে যায়। প্লাস্টিক, ধাতু এবং কাচের টুকরা মাছের খাবার খাওয়ার জন্য ভুল হতে পারে। প্রতিটি জ্যামাইকান প্রতিদিন প্রায় ১ কেজি (২ পাউন্ড) বর্জ্য উৎপন্ন করে; এর মাত্র ৭০% জাতীয় কঠিন বর্জ্য ব্যবস্থাপনা কর্তৃপক্ষ (এনএসডব্লিউএমএ) সংগ্রহ করে - বাকি ৩০% হয় পোড়ানো হয় বা নালাপথ বা জলপথে নিষ্পত্তি করা হয়। পরিবেশগত নীতি সাগর এবং পানির নীচে প্রাণী ও উদ্ভিদের জীবন বাঁচাতে সাহায্য করার জন্য বিভিন্ন নীতিমালা প্রণয়ন করা হচ্ছে। জ্যামাইকার সমন্বিত উপকূলীয় অঞ্চল ব্যবস্থাপনা (আইসিজেডএম) এর লক্ষ্য হল উপকূলীয় বাস্তুতন্ত্রের জীব বৈচিত্র্য এবং উৎপাদনশীলতা বজায় রেখে উপকূলীয় সম্পদের উপর নির্ভরশীলতার মাধ্যমে মানব সম্প্রদায়ের জীবনমান উন্নত করা। একটি অনুন্নত দেশের উন্নয়ন সমুদ্রের বাস্তুতন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে কারণ দেশের উন্নয়নের জন্য যে সমস্ত নির্মাণ করা হবে তা সামুদ্রিক জীব বৈচিত্র্যের ক্ষতিসাধন করতে পারে। অতিরিক্ত দালান, ক্ষমতাশালী বাজার প্রভাব দ্বারা চালিত এবং জনসংখ্যার কিছু বিভাগের মধ্যে দারিদ্র্য এবং ধ্বংসাত্মক শোষণ মহাসাগর এবং উপকূলীয় সম্পদের পতনে অবদান রাখে। উন্নয়নশীল পদক্ষেপগুলি যা মানুষের জীবনে অবদান রাখবে কিন্তু সমুদ্র ও এর বাস্তুতন্ত্রের জীবনেও কোন ক্ষতিসাধন করবে না এমন লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে জ্যামাইকা উপকূলীয় অঞ্চল ব্যবস্থাপনা করার চেষ্টা করছে। এর মধ্যে কিছু পদক্ষেপের মধ্যে রয়েছে: টেকসই মৎস্য চর্চা বিকাশ, টেকসই কৃষি কৌশল এবং অনুশীলন নিশ্চিত করা, জলযানগুলোর টেকসই ব্যবস্থাপনা এবং টেকসই পর্যটন পদক্ষেপগুলিকে উন্নীত করা ইত্যাদি। পর্যটন হল জ্যামাইকায় বৈদেশিক মুদ্রা আয়ের এক নম্বর উৎস এবং জাতীয় অর্থনীতির জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটকরা সাধারণত সমস্যা সম্পর্কে অজ্ঞাত থেকে এই দেশগুলিতে যান এবং তারা সমস্যাগুলিকে নানাভাবে প্রভাবিত করে। কারণ পর্যটকরা তাদের নিজস্ব দেশের তুলনায় ভিন্ন রীতিতে বসবাস করতে অভ্যস্ত হয় না। তবে জ্যামাইকা বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে যেমন: সমস্ত পর্যটন এলাকার জন্য নর্দমা শোধনাগার সুবিধা প্রদান, পর্যটন ক্রিয়াকলাপের পরিকল্পনা করার আগে পরিবেশের বহন ক্ষমতা নির্ধারণ, বিকল্প ধরনের পর্যটন ক্রিয়াকলাপ সরবরাহ করা পছন্দসই ফলাফল পেতে সাহায্য করতে পারে যেমন বিকল্প পর্যটন বিকাশ যা বর্তমান চাপ কমাবে, ঐতিহ্যবাহী পর্যটন কার্যক্রম সমর্থন করে এমন সম্পদের উপর জোর দেওয়া ইত্যাদি। জ্যামাইকায় সমুদ্র ও উপকূলীয় ব্যবস্থাপনায় টেকসই অর্থায়নে পর্যটক কীভাবে সাহায্য করতে পারে তা দেখার জন্য একটি গবেষণা করেছিল। জ্যামাইকা পর্যটন ফি শব্দ ব্যবহার না করে তারা পরিবেশগত ফি বলবে যাতে পর্যটকরা পরিবেশের উপর গুরুত্ব প্রদান করে। এই গবেষণার লক্ষ্য পরিবেশগত ফি বাস্তবায়নের সম্ভাব্যতা এবং দ্বীপের বর্তমান পর্যটক ভ্রমণের হারের উপর এই জাতীয় রাজস্ব উৎপাদনের উপকরণের সম্ভাব্য প্রভাব সম্পর্কে সংশ্লিষ্ট অংশীদারদের অবহিত করা। একটি ব্যবহারকারী ফি সিস্টেমের উন্নয়ন পরিবেশ ব্যবস্থাপনা এবং সুরক্ষার জন্য তহবিল যোগাতে সাহায্য করবে। ফলাফলগুলি দেখায় যে পর্যটকদের একটি উচ্চ ভোক্তা উদ্বৃত্ত জ্যামাইকায় অবকাশের সাথে যুক্ত এবং একটি পরিবেশগত করের তুলনায় একটি পর্যটন কর প্রদানের জন্য উল্লেখযোগ্যভাবে কম ইচ্ছা প্রকাশ করে। গবেষণার ফলাফলগুলি দেখায় যে করের "লেবেল" এবং সেইসাথে পরিবেশবাদী সুরক্ষা এবং পর্যটনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক প্রক্রিয়া সম্পর্কে উত্তরদাতার সচেতনতা তাদের সিদ্ধান্তের কাঠামোর জন্য গুরুত্বপূর্ণ। পর্যটকরা ভ্রমণ কর না দিয়ে পরিবেশগত ফি দিতে বেশি ইচ্ছুক। পরিবেশ ব্যবস্থাপনা এবং সুরক্ষার জন্য তহবিলের জন্য যথেষ্ট কর কিন্তু জ্যামাইকায় পর্যটক আকর্ষণীয় করার জন্য যথেষ্ট কম। এটিতে দেখানো হয়েছে যে যদি প্রতি জন ১ মার্কিন ডলারের একটি পরিবেশগত কর চালু করা হয় তবে এটি দর্শনীয় হারে উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে না এবং প্রায় ১.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করবে। জনসংখ্যাতাত্ত্বিক জাতিগত উৎপত্তি জ্যামাইকার বৈচিত্র্যপূর্ণ জাতিগত শিকড় জাতীয় নীতিবাক্যে (আউট অফ মেনি ওয়ান পিপল) প্রতিফলিত হয়েছে। ২৮,১২,০০০ জনসংখ্যার অধিকাংশ (জুলাই ২০১৮ অনুসারে) আফ্রিকান বা আংশিকভাবে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত অনেকে পশ্চিম আফ্রিকার দেশ ঘানা এবং নাইজেরিয়ায় তাদের উৎপত্তির সন্ধান করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যান্য প্রধান পৈতৃক এলাকা হল ইউরোপ, দক্ষিণ এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়া। জ্যামাইকানরা জাতি হিসাবে নিজেদেরকে জাতি হিসাবে চিহ্নিত করাকে অস্বাভাবিক মনে করে যেমন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মতো অন্যান্য দেশে বিশিষ্ট, বেশিরভাগ জ্যামাইকানরা জ্যামাইকান জাতীয়তাকে নিজের পরিচয় হিসাবে দেখে, জাতিগতভাবে নির্বিশেষে "জ্যামাইকান" হিসাবে চিহ্নিত করে। একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে দ্বীপে গড় মিশ্রণ ৭৮.৩% সাব-সাহারান আফ্রিকান, ১৬.০% ইউরোপীয় এবং ৫.৭% পূর্ব এশীয়। ২০২০ সালের আরেকটি গবেষণায় দেখা গেছে যে আফ্রিকান বংশোদ্ভূত জ্যামাইকানরা জনসংখ্যার ৭৬.৩% প্রতিনিধিত্ব করে, তারপরে ১৫.১% আফ্রো-ইউরোপীয়, ৩.৪% পূর্ব ভারতীয় এবং আফ্রো-পূর্ব ভারতীয়, ৩.২% ককেশীয়, ১.২% চীনা এবং ০.৮% অন্যান্য। এক্কোম্পোঙ এবং অন্যান্য বসতিগুলির জ্যামাইকান মেরুনরা আফ্রিকান ক্রীতদাসদের বংশধর যারা নিজস্ব স্বায়ত্তশাসিত সম্প্রদায় স্থাপন করার জন্য উপনিবেশ শাসন থেকে জ্যামাইকার অভ্যন্তরীণ পাহাড়ি ও বনাঞ্চলে পালিয়ে গিয়েছিল। অনেক মেরুন তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য অব্যাহত রেখেছে এবং তাদের নিজস্ব ভাষায় কথা বলে, যা স্থানীয়ভাবে ক্রোমান্তি নামে পরিচিত। ইন্দো-জ্যামাইকান এবং চীনা জ্যামাইকানদের অন্তর্ভুক্ত করে এশীয়রা দ্বিতীয় বৃহত্তম দল গঠন করে। ব্রিটিশ উপনিবেশিক সরকার ১৮৩৮ সালে দাসত্ব বিলুপ্তির পর শ্রমিকের ঘাটতি পূরণের জন্য আনা চুক্তিভিত্তিক শ্রমিকদের অধিকাংশই বংশধর জ্যামাইকাতে থেকে গেছে। বিশিষ্ট ভারতীয় জ্যামাইকানদের মধ্যে আছেন জকি শন ব্রিজমোহন, যিনি কেনটাকি ডার্বিতে প্রথম জ্যামাইকান ছিলেন, এনবিসি নাইটলি নিউজের সাংবাদিক লেস্টার হোল্ট এবং মিস জ্যামাইকা ওয়ার্ল্ড এবং বিশ্ব সুন্দরী বিজয়ী ইয়েন্দি ফিলিপস। ওয়েস্টমোরল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় এলাকা ইন্দো-জ্যামাইকানদের বিশাল জনসংখ্যার জন্য বিখ্যাত। তাদের ভারতীয় প্রতিপক্ষের পাশাপাশি, চীনা জ্যামাইকানরাও জ্যামাইকার সম্প্রদায় এবং ইতিহাসে অবিচ্ছেদ্যের ভূমিকা পালন করেছে। এই গোষ্ঠীর বিশিষ্ট বংশধরদের মধ্যে রয়েছে কানাডার বিলিয়নিয়ার বিনিয়োগকারী মাইকেল লি-চিন, সুপার মডেল নেওমি ক্যাম্পবেল এবং টাইসন বেকফোর্ড এবং ভিপি রেকর্ডসের প্রতিষ্ঠাতা ভিনসেন্ট "র‍্যান্ডি" চিন। লেবানন এবং সিরিয়ার বংশধরের প্রায় ২০,০০০ জ্যামাইকান আছে। এদের বেশিরভাগ খ্রিস্টান অভিবাসী ছিলেন যারা ১৯ শতকের গোড়ার দিকে লেবাননের উসমানীয় সাম্রাজ্য থেকে পালিয়ে এসেছিল। অবশেষে তাদের বংশধররা খুব সফল রাজনীতিবিদ এবং ব্যবসায়ী হয়ে ওঠে। এই গোষ্ঠীর উল্লেখযোগ্য জ্যামাইকানদের মধ্যে রয়েছে জ্যামাইকার সাবেক প্রধানমন্ত্রী এডওয়ার্ড সিগা, জ্যামাইকান রাজনীতিবিদ এবং প্রাক্তন বিশ্ব সুন্দরী লিসা হানা, জ্যামাইকান রাজনীতিবিদ এডওয়ার্ড জাকা এবং শাহিন রবিনসন এবং হোটেল ব্যবসায়ী আব্রাহাম ইলিয়াস ইসা। ১৮৩৫ সালে চার্লস এলিস, ১ম ব্যারন সীফোর্ড তার ১০,০০০ একর জমির মধ্যে ৫০০ একর ওয়েস্টমোরল্যান্ডে সিফোর্ড শহর জার্মান বন্দোবস্তের জন্য দিয়েছিলেন। আজ শহরের বেশিরভাগ বংশধরই সম্পূর্ণ বা আংশিক জার্মান বংশোদ্ভূত। ইংরেজ অভিবাসীদের প্রথম ঢেউ স্পেনীয়দের জয় করার পর ১৬৫৫ সালে দ্বীপে এসেছিল এবং তারা ঐতিহাসিকভাবে প্রভাবশালী গোষ্ঠী ছিল। এই গোষ্ঠীর বিশিষ্ট বংশধরদের মধ্যে রয়েছে নিউইয়র্কের প্রাক্তন মার্কিন গভর্নর ডেভিড প্যাটারসন, স্যান্ডেলস হোটেলের মালিক গর্ডন বুচ স্টুয়ার্ট, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রপতির উপদেষ্টা এবং পেল গ্রান্টের মা লুইস রাইস এবং যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা এবং জাতিসংঘে রাষ্ট্রদূত সুসান রাইস। প্রথম আইরিশ অভিবাসীরা ১৬০০ দশকে জ্যামাইকাতে যুদ্ধবন্দী হিসেবে এসেছিল এবং পরবর্তীতে তাদের শ্রমিক হওয়ার জন্য বাধ্য করা হয়েছিল। তাদের বংশধরদের মধ্যে রয়েছে জ্যামাইকার দুইজন জাতীয় নায়ক: প্রধানমন্ত্রী মাইকেল ম্যানলি এবং আলেকজান্ডার বুস্তামান্তে। ইংরেজ এবং আইরিশদের পাশাপাশি স্কটরা হল আরেকটি গোষ্ঠী যারা দ্বীপে উল্লেখযোগ্য প্রভাব ফেলেছে। স্কটল্যান্ড থেকে প্রথম জ্যামাইকান অধিবাসীরা নির্বাসিত বিদ্রোহী ছিল। পরবর্তীতে, তারা উচ্চাভিলাষী ব্যবসায়ীদের দ্বারা অনুসরণ করে যারা স্কটল্যান্ড এবং দ্বীপে তাদের দেশের সম্পত্তির মধ্যে সময় কাটায়। ফলস্বরূপ, দ্বীপে অনেক ক্রীতদাসের মালিক ছিল স্কটিশ পুরুষ এবং এইভাবে মিশ্র-জাতি জামাইকানদের একটি বড় সংখ্যা স্কটিশ বংশ দাবি করতে পারে। স্কটিশ-জ্যামাইকানদের মধ্যে উল্লেখযোগ্যভাবে আছেন ব্যবসায়ী জন প্রিঙ্গেল, সাবেক মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী কলিন পাওয়েল এবং মার্কিন অভিনেত্রী কেরি ওয়াশিংটন। জ্যামাইকাতে উল্লেখযোগ্য হারে পর্তুগিজ জ্যামাইকান জনসংখ্যাও রয়েছে যা প্রধানত সেফারডিক ইহুদি ঐতিহ্যের অন্তর্ভুক্ত। প্রথম ইহুদিরা খ্রিস্টধর্মে ধর্মান্তরিত হওয়ার জন্য বা মৃত্যুর মুখোমুখি হওয়ার পর ১৫ শতকে স্পেন থেকে অভিযাত্রী হিসাবে এসেছিল। তাদের মধ্যে অল্প সংখ্যক ক্রীতদাস মালিক এবং এমনকি বিখ্যাত জলদস্যু হয়ে ওঠে। ইহুদি ধর্ম অবশেষে জ্যামাইকায় খুব প্রভাবশালী হয়ে ওঠে এবং বর্তমানে জ্যামাইকাতে অনেক ইহুদি কবরস্থান দেখা যায়। বিখ্যাত ইহুদি বংশধরদের মধ্যে রয়েছে ড্যান্সহল শিল্পী সন পল, প্রাক্তন রেকর্ড প্রযোজক এবং আইল্যান্ড রেকর্ডসের প্রতিষ্ঠাতা ক্রিস ব্ল্যাকওয়েল এবং জ্যাকব ডি কর্ডোভা যিনি ডেইলি গ্লেনার পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা ছিলেন। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে জ্যামাইকাতে অভিবাসন বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানত চীন, হাইতি, কিউবা, কলম্বিয়া এবং লাতিন আমেরিকা থেকে অভিবাসন প্রত্যাশীরা আসছে; ২০,০০০ লাতিন আমেরিকান জ্যামাইকাতে বসবাস করে। ২০১৬ সালে, প্রধানমন্ত্রী অ্যান্ড্রু হলনেস স্পেনীয় ভাষা জ্যামাইকার দ্বিতীয় সরকারী ভাষা করার পরামর্শ দিয়েছিলেন। দ্বীপে সংযোগের সঙ্গে উল্লেখযোগ্য মার্কিনদের মধ্যে রয়েছে ফ্যাশন দুনিয়ার জনপ্রিয় রালফ লরেন, সমাজসেবী ডেইজি সোরোস, ব্ল্যাকস্টোনের শোয়ার্জম্যান পরিবার, ডেলাওয়্যারের প্রয়াত লেফটেন্যান্ট গভর্নর জন ডব্লিউ রোলিন্সের পরিবার, ফ্যাশন ডিজাইনার ভেনেসা নোয়েল, বিনিয়োগকারী গাই স্টুয়ার্ট, এডওয়ার্ড এবং প্যাট্রিসিয়া ফ্যালকেনবার্গ এবং আইহার্ট মিডিয়ার সিইও বব পিটম্যান, যাদের সকলেই জ্যামাইকা দ্বীপটিকে সমর্থন করার জন্য বার্ষিক দাতব্য অনুষ্ঠান করেন। ভাষাসমূহ জ্যামাইকা একটি দ্বিভাষিক দেশ হিসাবে গণ্য করা হয়, যেখানে জনসংখ্যার দ্বারা দুটি প্রধান ভাষা ব্যবহৃত হয়। সরকারী ভাষা হল ইংরেজি, যা সরকার, আইনি ব্যবস্থা, গণমাধ্যম এবং শিক্ষাসহ "জনজীবনের সকল ক্ষেত্রে ব্যবহার করা হয়"। যাইহোক, প্রাথমিক কথ্য ভাষা হল একটি ইংরেজি-ভিত্তিক ক্রেওল যাকে বলা হয় জ্যামাইকান পাতোইস (বা পাতোয়া)। দুটির একটি উপভাষা ধারাবাহিকতায় বিদ্যমান, বক্তারা প্রসঙ্গের ভিত্তিতে এবং তারা কার সাথে কথা বলছেন তার উপর নির্ভর করে বক্তৃতার একটি ভিন্ন নিবন্ধ ব্যবহার করে। "বিশুদ্ধ" পাতোইস, যদিও কখনো এটি কেবলমাত্র একটি বিশেষভাবে ইংরেজির বিচ্ছিন্ন উপভাষা হিসাবে দেখা হয়, এটি মূলত ইংরেজির সাথে পারস্পরিকভাবে বোধগম্য নয় এবং এটি একটি পৃথক ভাষা। জ্যামাইকান ল্যাঙ্গুয়েজ ইউনিটের ২০০৭ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে যে জনসংখ্যার ১৭.১ শতাংশ জ্যামাইকান প্রমিত ইংরেজিতে (জেএসই) একভাষিক, ৩৬.৫ শতাংশ পাতোয়াতে একভাষিক এবং ৪৬.৪ শতাংশ দ্বিভাষিক ছিল, যদিও এর আগে জরিপগুলি দ্বৈতত্বের একটি বৃহত্তর মানের দিকে নির্দেশ করেছিল (প্রায় ৯০ শতাংশ পর্যন্ত)। জ্যামাইকান শিক্ষাব্যবস্থা সম্প্রতি পাতোইসে পরিবর্তিত হওয়ার আনুষ্ঠানিক নির্দেশ দেওয়া শুরু করেছে, যখন জেএসইকে "শিক্ষার সরকারী ভাষা" হিসাবে ধরে হয়েছে। কিছু জ্যামাইকান এক বা একাধিক জ্যামাইকান সাংকেতিক ভাষা (জেএসএল), আমেরিকান সাংকেতিক ভাষা (এএসএল) বা আদিবাসী জ্যামাইকান গ্রামাঞ্চল সাংকেতিক ভাষা (কোনচরি সাইন) ব্যবহার করে। জেএসএল এবং এএসএল উভয়ই বিভিন্ন কারণে দ্রুত কোনচরি সাইনকে প্রতিস্থাপন করছে। অভিবাসন অনেক জ্যামাইকান অন্য দেশে দেশান্তরিত হয়েছে, বিশেষ করে যুক্তরাজ্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডায় চলে এসেছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্ষেত্রে, প্রতি বছর প্রায় ২০,০০০ জ্যামাইকানদের স্থায়ী বাসস্থান দেওয়া হয়। পুয়ের্তো রিকো, গায়ানা, বাহামা, কিউবার মতো অন্যান্য ক্যারিবীয় দেশেও জ্যামাইকানদের অভিবাসন হয়েছে। ২০০৪ সালে অনুমান করা হয়েছিল যে ২.৫ মিলিয়ন জ্যামাইকান এবং জ্যামাইকান বংশধর বিদেশে বাস করে। যুক্তরাজ্যের জ্যামাইকানরা আনুমানিক ৮,০০,০০০ তাদের দেশটির বৃহত্তম আফ্রিকান-ক্যারিবীয় গোষ্ঠী দ্বারা তৈরি করে। জ্যামাইকা থেকে যুক্তরাজ্যে বড় আকারের অভিবাসন ঘটেছিল মূলত ১৯৫০ এবং ১৯৬০ এর দশকে যখন দেশটি ব্রিটিশ শাসনের অধীনে ছিল। যুক্তরাজ্যের অধিকাংশ বড় শহরে জ্যামাইকান সম্প্রদায় বিদ্যমান। নিউইয়র্ক সিটি, বাফেলো, মিয়ামি মেট্রো এলাকা, আটলান্টা, শিকাগো, অরল্যান্ডো, ট্যাম্পা, ওয়াশিংটন ডিসি, ফিলাডেলফিয়া, হার্টফোর্ড, প্রভিডেন্স এবং লস এঞ্জেলেস সহ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অসংখ্য শহরে প্রবাসী জ্যামাইকানদের মনোযোগ বেশ উল্লেখযোগ্য। কানাডায়, জ্যামাইকান জনসংখ্যা টরন্টোতে কেন্দ্রীভূত তবে হ্যামিল্টন, মন্ট্রিল, উইনিপেগ, ভ্যাঙ্কুভার এবং অটোয়ার মতো জায়গায় ছোট ছোট সম্প্রদায় বাস করে। জ্যামাইকান কানাডিয়ানরা সমগ্র কৃষ্ণাঙ্গ কানাডিয়ান জনসংখ্যার প্রায় ৩০% নিয়ে গঠিত। উল্লেখযোগ্যভাবে ইথিওপিয়ান জ্যামাইকান অভিবাসীদের অনেক ছোট দল আছে, যাদের বেশিরভাগই রাস্তাফেরিয়ান, যাদের ধর্মতাত্ত্বিক বিশ্বদর্শন আফ্রিকা প্রতিশ্রুত ভূমি বা "সায়ন" বা আরো বিশেষভাবে ইথিওপিয়া, শ্রদ্ধার কারণে, যেখানে সাবেক ইথিওপীয় সম্রাট হাইল স্যালেসি অধিষ্ঠিত হয়েছিল। বেশিরভাগই রাজধানী আদ্দিস আবাবা থেকে প্রায় ১৫০ মাইল (২৪০ কিমি) দক্ষিণে ছোট শহর শশামানে বাস করে। অপরাধ ১৯৬২ সালে যখন জ্যামাইকা স্বাধীনতা লাভ করে, তখন হত্যার হার প্রতি ১,০০,০০০ বাসিন্দার মধ্যে ৩.৯ ছিল, যা তৎকালীন বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে কম হত্যার হার ছিল। ২০০৯ সালের মধ্যে এই হার বৃদ্ধি পেয়ে প্রতি ১,০০,০০০ বাসিন্দার মধ্যে ৬২ জন হত্যাকাণ্ডের শিকার হয়েছিল, যা বিশ্বের অন্যতম। জ্যামাইকান বাহিনী দল বা "ইয়ার্ডিস" কে কেন্দ্র করে সংগঠিত অপরাধ, দলীয় সহিংসতা জ্যামাইকার একটি গুরুতর সমস্যা হয়ে গিয়েছিল। জাতিসংঘের অনুমান অনুসারে, জ্যামাইকায় বহু বছর ধরে বিশ্বের অন্যতম হত্যার হার রয়েছে। জ্যামাইকার কিছু এলাকা, বিশেষ করে কিংস্টনের দরিদ্র এলাকা, মন্টেগো বে এবং অন্যান্য স্থানে উচ্চ মাত্রার অপরাধ ও সহিংসতার অভিজ্ঞতা রয়েছে। ২০১১ সালের পরও কৌশলগত কর্মসূচি চালু হওয়ার পর ২০১০ সালে নিম্নমুখী প্রবণতা অনুসরণ করে হত্যার হার কমতে শুরু করে। ২০১২ সালে জ্যামাইকার জাতীয় নিরাপত্তা মন্ত্রণালয় তথ্য অনুসারে জ্যামাইকাতে খুনের হার ৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছিল। তবুও ২০১৭ সালে হত্যাকাণ্ড আগের বছরের তুলনায় ২২% বেড়ে গিয়েছিল। অনেক জ্যামাইকান এলজিবিটি এবং আন্তঃলিঙ্গ মানুষের একটি বিরূপ রূপ হিসাবে মনে করে এবং সমকামীদের বিরুদ্ধে জনতার হামলার ঘটনা ঘটেছে। অসংখ্য উচ্চ-পদস্ত ডান্সহল এবং রাজ্ঞা শিল্পীরা স্পষ্টভাবে সমকামী পদ বৈশিষ্ট্যযুক্ত গান তৈরি করেছেন। জ্যামাইকাতে পুরুষ সমকামিতা অবৈধ এবং কারাদণ্ডের মাধ্যমে শাস্তিযোগ্য অপরাধ হিসাবে গণ্য করা হয়। প্রধান শহরসমূহ ধর্ম খ্রিস্টধর্ম জ্যামাইকায় চর্চা করা সবচেয়ে বড় ধর্ম। প্রায় ৭০% প্রতিবাদী মতবাদ; ক্যাথলিক মণ্ডলীরা মোট জনসংখ্যার মাত্র ২%। ২০০১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, দেশের বৃহত্তম প্রোটেস্ট্যান্ট সম্প্রদায় হল চার্চ অফ গড (২৪%), সেভেন্থ-ডে অ্যাডভেন্টিস্ট চার্চ (১১%), পেন্টেকোস্টাল (১০%), ব্যাপটিস্ট (৭%), অ্যাংলিকান (৪%), ইউনাইটেড চার্চ (২%), মেথডিস্ট (২%), মোরাভিয়ান (১%) এবং প্লাইমাউথ ব্রাদারেন (১%)। বেডওয়ার্ডিজম হল দ্বীপের স্থানীয় খ্রিস্টান ধর্মের একটি রূপ, কখনও কখনও একটি পৃথক বিশ্বাস হিসাবে দেখা হয়। ব্রিটিশ খ্রিস্টান বিলুপ্তিবাদী এবং ব্যাপ্টিস্ট মিশনারিরা দাসত্বের বিরুদ্ধে সংগ্রামে শিক্ষিত প্রাক্তন দাসদের সাথে যোগ দেওয়ার কারণে খ্রিস্টান বিশ্বাস গ্রহণযোগ্যতা লাভ করে। রাস্তাফারি আন্দোলনের ২৯,০২৬ অনুসারী অনুযায়ী ২০১১ সালের আদমশুমারি অনুসারে, ২৫,৩২৫ রাস্তাফেরিয়ান পুরুষ এবং ৩,৭০১ রাস্তাফেরিয়ান মহিলা ছিল। ১৯৩০ দশকে জ্যামাইকায় এই বিশ্বাসের উদ্ভব হয়েছিল এবং খ্রিস্টধর্মের মূলে থাকলেও এটি তার কেন্দ্রবিন্দুতে ব্যাপকভাবে আফ্রোকেন্দ্রিক, জ্যামাইকান কৃষ্ণাঙ্গ জাতীয়তাবাদী মার্কাস গার্ভে এবং ইথিওপিয়ার প্রাক্তন সম্রাট হাইল স্যালেসি মতো ব্যক্তিত্বকে শ্রদ্ধা করে। রাস্তাফারি তখন থেকে বিশ্বজুড়ে ছড়িয়ে পড়েছে, বিশেষ করে বড় কৃষ্ণাঙ্গ বা আফ্রিকান অভিবাসী অঞ্চলে। আফ্রিকা থেকে প্রাপ্ত বিভিন্ন বিশ্বাস এবং ঐতিহ্যবাহী ধর্মীয় অনুশীলন দ্বীপে চর্চা করা হয়, বিশেষ করে কুমিনা, কনভিন্স, মায়াল এবং ওবেহ। জ্যামাইকার অন্যান্য ধর্মের মধ্যে রয়েছে জেহোভার সাক্ষী (২% জনসংখ্যা), বাহাই বিশ্বাস, যার সংখ্যা সম্ভবত ৮,০০০ অনুসারী এবং ২১টি স্থানীয় আধ্যাত্মিক সমাবেশ, মরমোনিজম, বৌদ্ধ ধর্ম, এবং হিন্দু ধর্ম। হিন্দু দীপাবলি উত্সবটি ইন্দো-জ্যামাইকান সম্প্রদায়ের মধ্যে প্রতি বছর পালিত হয়। প্রায় ২০০ ইহুদির একটি ছোট জনসংখ্যাও রয়েছে, যারা নিজেদেরকে উদার-রক্ষণশীল হিসাবে বর্ণনা করে। জ্যামাইকার প্রথম ইহুদিরা তাদের শিকড় ১৫ শতকের প্রথম দিকে স্পেন এবং পর্তুগালে খুঁজে পায়। কাহাল কাদোশ শারে শালোম, ইজরায়েলীদের ইউনাইটেড কনগ্রিগেশন নামেও পরিচিত, এটি কিংস্টন শহরে অবস্থিত একটি ঐতিহাসিক ইহুদি উপাসনালয়। মূলত ১৯১২ সালে নির্মিত, এটি দ্বীপে বাকী সরকারি এবং একমাত্র ইহুদি উপাসনালয়। শারে শালোম হল বিশ্বের কয়েকটি ইহুদি উপাসনালয়গুলির মধ্যে এটি একটি যেখানে বালির আচ্ছাদিত মেঝে রয়েছে এবং এটি একটি জনপ্রিয় পর্যটন গন্তব্য৷ অন্যান্য ছোট গোষ্ঠীর মধ্যে রয়েছে মুসলিম, যারা ৫,০০০ অনুসারী দাবি করে। আশুরার মুসলিম ছুটির দিন (স্থানীয়ভাবে হুসায় বা হোসে নামে পরিচিত) এবং ঈদ শত শত বছর ধরে দ্বীপ জুড়ে পালিত হয়ে আসছে। অতীতে, প্রতিটি প্যারিশে প্রতিটি বৃক্ষরোপণ হোসে উদযাপন করত। বর্তমানে এটিকে ভারতীয় আনন্দমেলা বলা হয় এবং সম্ভবত এটি ক্লারেন্ডনে সবচেয়ে বেশি পরিচিত যেখানে এটি প্রতি আগস্টে উদযাপন করা হয়। সকল ধর্মের মানুষ পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শন করে অনুষ্ঠানে যোগ দেয়। সংস্কৃতি সঙ্গীত একটি ছোট জাতি হওয়া সত্ত্বেও জ্যামাইকান সংস্কৃতির একটি শক্তিশালী বিশ্বব্যাপী উপস্থিতি রয়েছে। রেগে, স্কা, মেন্টো, রকস্টেডি, ডাব এবং সাম্প্রতিককালে, ডান্সহল এবং রাগা সবই দ্বীপের প্রাণবন্ত, জনপ্রিয় রেকর্ডিং শিল্পে উদ্ভূত হয়েছে। এগুলি নিজেরাও অনেক অন্যান্য ধারাকে প্রভাবিত করেছে, যেমন পাংক রক (রেগে এবং স্কা মাধ্যমে), ডাব কবিতা, নিউ ওয়েভ, টু-টোন, লাভার্স রক, রেগেটন, জঙ্গল, ড্রাম এবং বেস, ডাবস্টেপ, গ্রাইম এবং আমেরিকান র‍্যাপ সঙ্গীত। বব মার্লে সম্ভবত সবচেয়ে পরিচিত জ্যামাইকান সঙ্গীতশিল্পী; ১৯৬০-৭০ এর দশকে তার ব্যান্ড দ্য ওয়েইলারের সাথে তার অনেক হিট গান ছিল, রেগে আন্তর্জাতিকভাবে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এবং লক্ষ লক্ষ রেকর্ড বিক্রি করে। টুটস হিবার্ট, মিলি স্মল, বার্নিং স্পিয়ার, অল্টন এলিস, লি "স্ক্র্যাচ" পেরি, গ্রেগরি আইজ্যাকস, হাফ পিন্ট, প্রোটোজে, পিটার তোশ, বানি ওয়েলার, বিগ ইয়ুথ, জিমি ক্লিফ, ডেনিস ব্রাউন, ডেসমন্ড ডেকার, বেরেস হ্যামন্ড, বেনি ম্যান, শ্যাগি, গ্রেস জোন্স, শাব্বা র‍্যাঙ্কস, সুপার ক্যাট, বুজু ব্যান্টন, সন পল, আই ওয়েইন, বাউন্টি কিলার সহ আরও অনেক আন্তর্জাতিকভাবে পরিচিত শিল্পী জ্যামাইকায় জন্মগ্রহণ করেছিলেন। সাহিত্য সাংবাদিক এবং লেখক এইচ.জি. ডি লিসার (১৮৭৮-১৯৪৪) তার অনেক উপন্যাসের জন্য তার জন্মভূমিকে ব্যবহার করেছেন। জ্যামাইকার ফালমাউথে জন্মগ্রহণকারী, ডি লিসার অল্প বয়সে জ্যামাইকা টাইমসের একজন প্রতিবেদক হিসাবে কাজ করেছিলেন এবং ১৯২০ সালে প্ল্যান্টার্স পাঞ্চ পত্রিকা প্রকাশ করতে শুরু করেছিলেন। দ্য হোয়াইট উইচ অফ রোজহল তার অন্যতম বিখ্যাত উপন্যাস। তিনি জ্যামাইকান প্রেস অ্যাসোসিয়েশনের অনারারি প্রেসিডেন্ট মনোনীত হন; তিনি জ্যামাইকান চিনি শিল্পের প্রচারের জন্য তার পেশাদার কর্মজীবন জুড়ে কাজ করেছেন। রজার মাইস (১৯০৫–১৯৫৫), একজন সাংবাদিক, কবি এবং নাট্যকার অনেক ছোট গল্প, নাটক এবং উপন্যাস লিখেছেন, যার মধ্যে রয়েছে দ্য হিলস ওয়্যার জয়ফুল টুগেদার(১৯৫৩), ব্রাদার ম্যান(১৯৫৪) এবং ব্ল্যাক লাইটনিং (১৯৫৫)। ইয়ান ফ্লেমিং (১৯০৮-১৯৬৪), যার জ্যামাইকায় একটি বাড়ি ছিল যেখানে তিনি যথেষ্ট সময় কাটিয়েছেন, বারবার দ্বীপটিকে তার জেমস বন্ড উপন্যাসে একটি স্থাপনা হিসাবে ব্যবহার করেছেন, যার মধ্যে রয়েছে লাইভ অ্যান্ড লেট ডাই, ডক্টর নো, "ফর ইয়োর আইজ অনলি", দ্য ম্যান উইথ দ্য গোল্ডেন গান এবং অক্টোপসি এবং দি লিভিং ডেলাইটস। এছাড়াও, জেমস বন্ড ক্যাসিনো রয়্যালে জ্যামাইকা-ভিত্তিক কভার ব্যবহার করে। এখন পর্যন্ত, শুধুমাত্র জেমস বন্ড ফিল্ম অ্যাডাপ্টেশন যা জ্যামাইকাতে সেট করা হয়েছে তা হল ডক্টর নো। কাল্পনিক দ্বীপ সান মনিকের জন্য লাইভ অ্যান্ড লেট ডাই-এর চিত্রগ্রহণ জ্যামাইকায় হয়েছে। মারলন জেমস (১৯৭০), ঔপন্যাসিক তিনটি উপন্যাস প্রকাশ করেছেন: জন ক্রো'স ডেভিল (২০০৫), দ্য বুক অফ নাইট উইমেন (২০০৯) এবং এ ব্রিফ হিস্ট্রি অফ সেভেন কিলিংস (২০১৪)। তিনি ২০১৫ সালে ম্যান বুকার পুরস্কার বিজয়ী হয়েছিলেন। চলচ্চিত্র ১৯৬০ এর দশকের গোড়ার দিকে জ্যামাইকার চলচ্চিত্রের একটি বিচিত্র ইতিহাস রয়েছে। জ্যামাইকার অপরাধী যুবকদের একটি দৃষ্টিতে ১৯৭০-এর দশকের মিউজিক্যাল ক্রাইম ফিল্ম দ্য হার্ডার দে কাম-এ উপস্থাপিত হয়েছে, যেখানে জিমি ক্লিফ একজন হতাশ (এবং সাইকোপ্যাথিক) রেগে সঙ্গীতশিল্পী হিসেবে অভিনয় করা হয়েছে যে একটি খুনের অপরাধী। অন্যান্য উল্লেখযোগ্য জ্যামাইকান চলচ্চিত্রগুলির মধ্যে রয়েছে কান্ট্রিম্যান , রকার্স, ড্যান্সহল কুইন, ওয়ান লাভ, শোটাস, আউট দ্য গেট, থার্ড ওয়ার্ল্ড কপ এবং কিংসটন প্যারাডাইস। জ্যামাইকাও প্রায়শই চিত্রগ্রহণের স্থান হিসাবে ব্যবহৃত হয়, যেমন জেমস বন্ড চলচ্চিত্র ড. নো(১৯৬২), প্যাপিলন (১৯৭৩) অভিনীত স্টিভ ম্যাককুইন, ককটেল (১৯৮৮) অভিনীত টম ক্রুজ, এবং ১৯৯৩ সালের ডিজনি কমেডি কুল রানিংস, যা শীতকালীন অলিম্পিকে জ্যামাইকার প্রথম ববস্লেড দল তৈরি করার চেষ্টা করার ঐতিহাসিক গল্পের উপর ভিত্তি করে তৈরি হয়েছে। রন্ধনপ্রণালী জ্যামাইকা দ্বীপটি তার জ্যামাইকান জার্ক মশলা, তরকারি এবং চাল ও মটরের জন্য বিখ্যাত, যা জ্যামাইকান খাবারের অবিচ্ছেদ্য অংশ। জ্যামাইকা রেড স্ট্রাইপ বিয়ার এবং জ্যামাইকান ব্লু মাউন্টেন কফির জন্মস্থান। জাতীয় প্রতীক (জ্যামাইকা তথ্য পরিষেবা থেকে) জাতীয় পাখি: লাল-বিলযুক্ত স্ট্রিমারটেল (ডাক্তার পাখিও বলা হয়) (একটি হামিংবার্ড, ট্রচিলাস পলিটমাস) জাতীয় ফুল - লিগ্নাম ভিটা (গুয়াকাম অফিসিসনাল) জাতীয় গাছ: নীল মহো (হিবিস্কাস ট্যালিপারটি ইলাটাম) জাতীয় ফল: আক্কি (ব্লিঘিয়া সাপিদা) জাতীয় নীতিবাক্য: "অনেকের মধ্যে, এক জন।" ক্রীড়া শিক্ষা আরও দেখুন জ্যামাইকার ইতিহাস জ্যামাইকা, ল্যান্ড উই লাভ রাস্তাফারি তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ সরকারী বিবরণ জামাইকা সরকার রাজ-পরিবারের ওয়েবসাইটে জ্যামাইকা জ্যামাইকা তথ্য সেবার সরকারী ওয়েবসাইট সাধারণ তথ্য জ্যামাইকা দ্য ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক, সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি জ্যামাইকা - UCB Libraries GovPubs থেকে কার্লিতে জ্যামাইকা বিবিসি নিউজ থেকে জ্যামাইকা জামাইকা জাতীয় গ্রন্থাগার থেকে ক্যারিবীয় ডিজিটাল লাইব্রেরিতে উপকরণ জ্যামাইকা ভার্চুয়াল ট্যুর এইচডি - দ্বীপের চারপাশে অনেকগুলি অবস্থান প্রদর্শন উত্তর আমেরিকার রাষ্ট্র জ্যামাইকা ক্যারিবীয় দ্বীপ জি১৫ রাষ্ট্র দ্বীপ রাষ্ট্র ইংরেজি ভাষী দেশ ও অঞ্চল ক্যারিবীয় রাষ্ট্র কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র প্রাক্তন ব্রিটিশ উপনিবেশ ছোট দ্বীপ উন্নয়নশীল রাষ্ট্র ১৯৬২-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল ক্যারিবীয় সম্প্রদায়ের সদস্য রাষ্ট্র বৃহত্তর আন্তিলীয় দ্বীপপুঞ্জ প্রাক্তন স্পেনীয় উপনিবেশ সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Jamaica
Jamaica
Jamaica ( jə-MAY-kə; Jamaican Patois: Jumieka [dʒʌˈmie̯ka]) is an island country in the Caribbean Sea and the West Indies. At 10,990 square kilometres (4,240 sq mi), it is the third largest island—after Cuba and Hispaniola—of the Greater Antilles and the Caribbean. Jamaica lies about 145 km (90 mi) south of Cuba, 191 km (119 mi) west of Hispaniola (the island containing Haiti and the Dominican Republic), and 215 km (134 mi) south-east of the Cayman Islands (a British Overseas Territory). The indigenous Taíno peoples of the island gradually came under Spanish rule after the arrival of Christopher Columbus in 1494. Many of the indigenous people either were killed or died of diseases, after which the Spanish brought large numbers of Africans to Jamaica as slaves. The island remained a possession of Spain, under the name Santiago, until 1655, when England (part of what would become the Kingdom of Great Britain) conquered it and named it Jamaica. It became an important part of the colonial British West Indies. Under Britain's colonial rule, Jamaica became a leading sugar exporter, with a plantation economy dependent on continued importation of African slaves and their descendants. The British fully emancipated all slaves in 1838, and many freedmen chose to have subsistence farms rather than to work on plantations. Beginning in the 1840s, the British began using Chinese and Indian indentured labourers for plantation work. Jamaicans achieved independence from the United Kingdom on 6 August 1962. With 2.8 million people, Jamaica is the third most populous Anglophone country in the Americas (after the United States and Canada), and the fourth most populous country in the Caribbean. Kingston is the country's capital and largest city. Most Jamaicans are of Sub-Saharan African ancestry, with significant European, East Asian (primarily Chinese), Indian, Lebanese, and mixed-race minorities. Because of a high rate of emigration for work since the 1960s, there is a large Jamaican diaspora, particularly in Canada, the United Kingdom, and the United States. The country has a global influence that belies its small size; it was the birthplace of the Rastafari religion, reggae music (and such associated genres as dub, ska and dancehall), and it is internationally prominent in sports, including cricket, sprinting, and athletics. Jamaica has sometimes been considered the world's least populous cultural superpower. Jamaica is an upper-middle-income country with an economy heavily dependent on tourism; it has an average of 4.3 million tourists a year. The country performs favourably in measures of press freedom, democratic governance and sustainable well-being. Jamaica is a parliamentary constitutional monarchy with power vested in the bicameral Parliament of Jamaica, consisting of an appointed Senate and a directly elected House of Representatives. Andrew Holness has served as Prime Minister of Jamaica since March 2016. As a Commonwealth realm, with Charles III as its king, the appointed representative of the Crown is the Governor-General of Jamaica, an office held by Patrick Allen since 2009.
1347
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%A8
জাপান
জাপান (, ঞ়িপ্পোঙ়্ বা ঞ়িহোঙ়্; পুরো নাম বা ঞ়িহোঙ়্-কোকু, "জাপান রাষ্ট্র") হল পূর্ব এশিয়ার একটি দ্বীপ রাষ্ট্র। এই দেশটি প্রশান্ত মহাসাগরের বুকে জাপান সাগর, পূর্ব চীন সাগর, চীন, উত্তর কোরিয়া, দক্ষিণ কোরিয়া ও রাশিয়ার পূর্ব দিকে উত্তরে ওখোৎস্ক সাগর থেকে দক্ষিণ পূর্ব চীন সাগর ও তাইওয়ান পর্যন্ত প্রসারিত। যে কাঞ্জি অনুসারে জাপান নামটি এসেছে, সেটির অর্থ "সূর্য উৎস"। একারণে জাপানকে প্রায়শই "উদীয়মান সূর্যের দেশ" বলে অভিহিত করা হয়। জাপান একটি যৌগিক আগ্নেয়গিরীয় দ্বীপমালা। এই দ্বীপমালাটি প্রায় ৬,৮৫২টি দ্বীপ নিয়ে গঠিত। জাপানে চারটি বৃহত্তম দ্বীপ রয়েছে। দ্বীপগুলো হলো- হোনশু, হোক্কাইদো, ক্যুশু ও শিকোকু। এই চারটি দ্বীপ জাপানের মোট ভূখণ্ডের ৯৭% এলাকা নিয়ে গঠিত। জাপানের জনসংখ্যা ১২৬ মিলিয়ন। জনসংখ্যার হিসেবে এটি বিশ্বের ১০ম বৃহত্তম রাষ্ট্র। জাপানের রাজধানী টোকিও শহরের জনসংখ্যা প্রায় ৯.১ মিলিয়ন। এই শহরটি অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও উন্নয়ন সংস্থার ২য় বৃহত্তম মূল শহর। টোকিও ও পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন রাজ্য নিয়ে গঠিত বৃহত্তর টোকিও অঞ্চলের জনসংখ্যা ৩৫ মিলিয়নেরও বেশি। এটি বিশ্বের বৃহত্তম মহানগরীয় অর্থনীতি। পুরাতাত্ত্বিক গবেষণার ফলে জানা গিয়েছে যে উচ্চ প্যালিওলিথিক যুগেও জাপানে জনবসতির অস্তিত্ব ছিল। জাপানের প্রথম লিখিত উল্লেখ পাওয়া যায় খ্রিস্টীয় ১ম শতাব্দীতে রচিত চীনা ইতিহাস গ্রন্থগুলিতে। জাপানের ইতিহাসে অন্যান্য বিভিন্ন অঞ্চলের প্রভাব দেখা যায়। এই দেশের ইতিহাসে প্রথমে চীনা সাম্রাজ্যের প্রভাব পড়েছিল। তারপর একটি বিচ্ছিন্নতার যুগ কাটিয়ে এই দেশের ইতিহাসে পড়ে পশ্চিম ইউরোপের প্রভাব। ১২শ শতাব্দী থেকে ১৮৬৮ সাল পর্যন্ত শোগুন নামের সামরিক সামন্ত-শাসকরা সম্রাট উপাধিতে জাপান শাসন করেছিলেন। ১৭শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে জাপান এক দীর্ঘ বিচ্ছিন্নতার পর্যায়ে প্রবেশ করে। ১৮৫৩ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নৌবাহিনী পাশ্চাত্যের সামনে জাপানকে খুলে দেওয়ার জন্য চাপ দিলে সেই বিচ্ছিন্নতার যুগের অবসান ঘটে। প্রায় দুই দশক আভ্যন্তরিণ বিবাদ ও বিদ্রোহ চলার পর ১৮৬৮ সালে মেইজি সম্রাট রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত হন এবং জাপান সাম্রাজ্য ঘোষিত হয়। এই সাম্রাজ্যে সম্রাট জাতির দিব্য প্রতীকের সম্মান পান। ১৯শ শতাব্দীর শেষভাগে এবং ২০শ শতাব্দীর প্রথম ভাগে জাপান প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধ, রুশ-জাপান যুদ্ধ ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধে জয়লাভ করে। এই ক্রমবর্ধমান সামরিক যুগে জাপান নিজ সাম্রাজ্যের পরিধি বিস্তৃত করে। ১৯৩৭ সালের দ্বিতীয় চীন-জাপান যুদ্ধ ১৯৪১ সালের দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের একটি বর্ধিত অংশে পরিণত হয়। ১৯৪৫ সালে জাপানের হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শেষ হয়। ১৯৪৭ সালে সংশোধিত সংবিধান গ্রহণের পর জাপান একটি এককেন্দ্রিক সাংবিধানিক রাজতন্ত্রে পরিণত হয়। এই ব্যবস্থায় সম্রাটের পাশাপাশি কোক্কাই নামে একটি নির্বাচিত আইনসভাও গঠিত হয়। জাপান জাতিসংঘ, জি-৭, জি৮ ও জি২০ গোষ্ঠীগুলির সদস্য। এই রাষ্ট্রটি একটি মহাশক্তিধর রাষ্ট্র। নামমাত্র মোট আভ্যন্তরিণ উৎপাদন অনুযায়ী জাপান বিশ্বের ৩য়-বৃহত্তম অর্থনীতি এবং ক্রয়ক্ষমতার সাম্য অনুযায়ী ৪র্থ-বৃহত্তম অর্থনীতি। এছাড়া জাপান বিশ্বের ৫ম-বৃহত্তম রফতানিকারক এবং ৫ম বৃহত্তম আমদানিকারক রাষ্ট্র। সরকারিভাবে জাপান যুদ্ধ ঘোষনার অধিকার বর্জন করলেও এই দেশটি একটি আধুনিক সামরিক বাহিনী রেখেছে। এদেশের সামরিক বাজেট বিশ্বের ৮ম বৃহত্তম সামরিক বাজেট। অবশ্য জাপানের সামরিক বাহিনীর কাজ হল আত্মরক্ষা ও শান্তিরক্ষা। জাপান একটি উন্নত দেশ। এখানে জীবনযাত্রার মান ও মানব উন্নয়ন সূচক উচ্চ। সারা বিশ্বের মধ্যে এই দেশে গড় আয়ু সর্বাধিক এবং শিশু মৃত্যুর হার তৃতীয় সর্বনিম্ন। দেশীয় তরবার সূচকে জাপানের স্থান প্রথম। বিশ্বশান্তি সূচকে এই রাষ্ট্রের স্থান সর্বোচ্চ। নাম-ব্যুৎপত্তি ইংরেজি শব্দ জাপান শব্দটি সম্ভবত এসেছে জাপানি নাম নিহন-এর () আদি মান্ডারিন চীনা বা উ চীনা উচ্চারণ থেকে। জাপানি ভাষায় এই শব্দটির উচ্চারণ নিপ্পন () বা নিহন ()। জাপানি জাতি নিজেদের বলে এবং নিজেদের ভাষাকে বলে । মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠা থেকে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের শেষ পর্যন্ত জাপানের পোষাকি নাম ছিল বা মহান জাপান সাম্রাজ্য। বর্তমানে নামদুটি রাষ্ট্রের পোষাকি নাম হিসেবে ব্যবহৃত হয়। জাপানের মতো যেসব দেশগুলির পোষাকি নামে কোনো বর্ণনাত্মক অভিধা যুক্ত নেই, সেগুলিকেই (অর্থাৎ, দেশ, জাতি বা রাষ্ট্র) শব্দ দ্বারা অভিহিত করা হয়। অক্ষরটির অর্থ "সূর্য" বা "দিন" এবং অক্ষরটির অর্থ "ভিত্তি" বা "উৎস"। অক্ষরযুগলের অর্থ "সূর্যের উৎস" বা "সূর্যোদয়" (একটি চীনা দৃষ্টিকোণ থেকে, সূর্য জাপান থেকে ওঠে)। এই অক্ষরযুগলের অর্থ থেকেই জাপানের জনপ্রিয় পাশ্চাত্য বর্ণনা "সূর্যোদয়ের দেশ" ধারণাটি এসেছে। "নিহন" শব্দটির আনুষ্ঠানিক ব্যবহার শুরু হওয়ার আগে জাপান বা নামে পরিচিত ছিল। জাপানের ইংরেজি নামটি প্রাচীন বাণিজ্যপথ ধরে পাশ্চাত্যে পৌঁছেছিল। প্রাচীন মান্ডারিন বা সম্ভবত আদি ওয়ু চীনা ভাষায় জাপান শব্দের যে উচ্চারণটি (吳語) মার্কো পোলো নথিভুক্ত করেছিলেন, সেটি হল সিপ্যাঙ্গু (Cipangu)। ওয়ু ভাষার একটি উপভাষা আধুনিক শাংহাইনিজে জাপান নামের অক্ষরগুলির () উচ্চারণ যেপ্পেন । প্রাচীন মালয় ভাষায় জাপান শব্দটি হয়েছে জেপ্যাং। এই শব্দটি একটি দক্ষিণ উপকূলীয় চীনা উপভাষা থেকে গৃহীত হয়েছে। উক্ত উপভাষাটি হল সম্ভবত ফুকিয়েনীয় বা নিংপো। ১৬শ শতাব্দীতে মালাক্কায় মালয় শব্দটির সঙ্গে প্রথমে পর্তুগিজ বণিকরা পরিচিত হন। তারাই এই শব্দটি প্রথম ইউরোপে নিয়ে আসেন। ইংরেজি ভাষায় এই শব্দটির একটি পুরনো উল্লেখ পাওয়া যায় ১৫৬৫ সালে লেখা একটি চিঠিতে। সেই চিঠিতে এই শব্দটির বানান ছিল জিয়াপান (Giapan)। ইতিহাস প্রাগৈতিহাসিক যুগ ও প্রাচীন যুগ আনুমানিক খ্রিস্টপূর্ব ৩০,০০০ অব্দের একটি পুরনো প্রস্তরযুগীয় সংস্কৃতি জাপানি দ্বীপমালায় প্রথম মানব জনবসতি গড়ে তুলেছিল বলে জানা গিয়েছে। এরপর খ্রিস্টপূর্ব ১৪,০০০ অব্দ নাগাদ (জামোন যুগের শুরুতে) মধ্য প্রস্তরযুগ থেকে নব্য প্রস্তরযুগের মধ্যবর্তী সময়ে একটি সেমি-সেড্যানটারি শিকারী-সংগ্রাহক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে। এদের মধ্যে সমসাময়িক কালের আইনু জাতি ও ইয়ামাতো জাতির পূর্বপুরুষেরাও ছিলেন। এই মানুষেরা গুহায় বাস করত এবং এদের জীবিকা ছিল মৌলিক কৃষিকাজ। এই যুগে নির্মিত চিত্রিত মাটির পাত্রগুলি বিশ্বের প্রাচীনতম অধুনা-বর্তমান মৃৎশিল্পের কয়েকটি নিদর্শন। খ্রিস্টপূর্ব ৩০০ অব্দ নাগাদ ইয়ায়োই জাতি জাপানি দ্বীপপুঞ্জে প্রবেশ করে জোমনদের সঙ্গে মিশে যেতে শুরু করে। খ্রিস্টপূর্ব ৫০০ অব্দ নাগাদ শুরু হওয়া ইয়ায়োই যুগে ভিজে-চাল উৎপাদন, মৃৎশিল্পের একটি নতুন ধারার বিকাশ, এবং কোরিয়া ও চীনের অনুসরণে ধাতুবিদ্যার চর্চা শুরু হয়। চীনা বুক অফ হান-এ প্রথম জাপানের লিখিত ইতিহাস পাওয়া যায়। তিন রাজ্যের নথি অনুযায়ী, খ্রিস্টীয় ৩য় শতাব্দীর জাপান দ্বীপমালার সবচেয়ে শক্তিশালী রাজ্যটির নাম ছিল ইয়ামাতাই-কোকু। কোরিয়ার বায়েকজে থেজে জাপানে প্রথম বৌদ্ধধর্মের আগমন ঘটেছিল। তবে জাপানি বৌদ্ধধর্মের পরবর্তীকালীন বিকাশ ঘটেছিল প্রধানত চীনা প্রভাবে। প্রথম দিকে জাপানে বৌদ্ধধর্ম বাধাপ্রাপ্ত হলেও, পরে এই ধর্ম জাপানের শাসকশ্রেণির পৃষ্ঠপোষকতা লাভ করে এবং অসুকা যুগে (৫৯২-৭১০ খ্রিষ্টাব্দ) সর্বত্র মান্যতা পায়। ৮ম শতাব্দীর নারা যুগে (৭১০-৭৮৪) জাপানে শক্তিশালী রাষ্ট্রের উদ্ভব ঘটে। এই সময় রাষ্ট্রশক্তির কেন্দ্র ছিল হেইজো-ক্যো-র রাজসভা (আধুনিক নারা)। নারা পর্যায়ে জাপানি সাহিত্যের বিকাশ ঘটতে শুরু করে। এই যুগেই বৌদ্ধধর্ম-অনুপ্রাণিত শিল্পকলা ও স্থাপত্যেরও বিকাশ ঘটতে শুরু করেছিল। ৭৩৫-৭৩৭ খ্রিষ্টাব্দের বসন্তরোগ মহামারীতে সম্ভবত জাপানের এক-তৃতীয়াংশ অধিবাসীর মৃত্যু ঘটে। ৭৮৪ সালে [[সম্রাট কাম্মু নারা থেকে নাগাওকা-ক্যো-তে রাজধানী সরিয়ে আনেন। এরপর ৭৯৪ সালে হেইয়ান-ক্যো-তে (আধুনিক ক্যোটো) রাজধানী অপসারিত হয়। এই সময় হেইয়ান যুগ (৭৯৪-১১৮৫) শুরু হয়। এই যুগেই জাপানের স্বতন্ত্র সংস্কৃতির উদ্ভব ঘটে। এই যুগ শিল্পকলা, কবিতা ও গদ্য সাহিত্যের জন্য খ্যাত। মুরাসাকি শিকিবুর দ্য টেল অফ গেনজি ও জাপানের জাতীয় সংগীত কিমিগায়ো-এর কথা এই যুগেই রচিত হয়। হেইয়ান যুগ থেকেই প্রধানত দুটি প্রধান সম্প্রদায়ের (সাইচোর টেন্ডাই ও কুকাইয়ের শিংগন) মাধ্যমে বৌদ্ধধর্ম ছড়িয়ে পড়তে থাকে। ১১শ শতাব্দীর শেষার্ধ্বে পিওর ল্যান্ড বৌদ্ধধর্ম (জোদ-শু, জোদ-শিংশু) খুবই জনপ্রিয়তা অর্জন করেছিল। সামন্ত যুগ জাপানের সামন্ত যুগে যোদ্ধা সামুরাইদের উত্থান ঘটেছিল শাসকশ্রেণি হিসেবে। ১১৮৫ খ্রিস্টাব্দে গেনপাইয়ের যুদ্ধে তাইরা গোষ্ঠীর পরাজয়ের পরে (হেইকে উপাখ্যান নামক মহাকাব্যে যে যুদ্ধের কথা উল্লিখিত হয়েছে) সামুরাই মিনামোতো নো ইয়োরিতোমো শোগুন নিযুক্ত হন এবং কামাকুরায় শাসনকেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করেন। তাঁর মৃত্যুর পর শোগুন পদে অন্তর্বর্তীকালীন রাজশক্তি হিসেবে হোজো গোষ্ঠী ক্ষমতায় আসে। কামাকুরা যুগে (১১৮৫-১৩৩৩) চীন থেকে বৌদ্ধধর্মের জেন শাখা জাপানে পরিচিতি লাভ করে। সামুরাই শ্রেণির মধ্যে এই ধর্মমত জনপ্রিয়তা লাভ করেছিল।.১২৭৪ ও ১২৮১ খ্রিস্টাব্দে কামাকুরা শোগুনতন্ত্র জাপানে মোঙ্গল আক্রমণকে প্রতিহত করেছিল। কিন্তু পরে এই শোগুনতন্ত্রের অবসান ঘটে সম্রাট গো-দাউগোর হাতে। খ্রিস্টাব্দে আশিকাগা তাকাউজির হাতে দাইগো নিজে পরাজিত হন। আশিকাগা তাকাউজি ক্যোটোর মুরোমাচিতে শোগুনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। এই সময় থেকে মুরোমাচি যুগ (১৩৩৬-১৫৭৩) শুরু হয়। আশিকাগা শোগুনতন্ত্র আশিকাগা ইয়োশিমিৎসুর যুগে গৌরব অর্জন করে। এই সময় জেন বৌদ্ধধর্ম-ভিত্তিক সংস্কৃতি (মিয়াবি শিল্পকলা) বিকাশ লাভ করে। এরপরই হিগাশিয়ামা সংস্কৃতির বিবর্তন শুরু হয় এবং ১৬শ শতাব্দী পর্যন্ত সেই সংস্কৃতির গৌরবময় যুগ অব্যাহত থাকে। অন্যদিকে পরবর্তীকালের আশিকাগা শোগুনতন্ত্র সামন্ত্রতান্ত্রিক যোদ্ধা-সেনাপতিদের (দাইম্যো) নিয়ন্ত্রণ করতে অসমর্থ হয়। এর ফলে ১৪৬৭ খ্রিস্টাব্দে একটি গৃহযুদ্ধ (ওনিন যুদ্ধ) বেধে যায়। এর যুদ্ধের ফলে শতাব্দী-দীর্ঘ সেনগোকু যুগের ("যুযুধান রাষ্ট্রসমূহ") সূত্রপাত ঘটে। ১৬শ শতাব্দীতে পর্তুগাল থেকে বণিক ও জেসুইট মিশনারিরা প্রথম জাপানে এসে উপস্থিত হয়। এরাই প্রথম জাপানের সঙ্গে পাশ্চাত্যের বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক আদানপ্রদান গড়ে তোলে। এর ফলে ওদা নোবুনাগা ইউরোপীয় প্রযুক্তি ও আগ্নেয়াস্ত্র হাতে পান এবং তার সাহায্যে তিনি অন্যান্য অনেক দাইম্যো জয় করেন। এই শতাব্দীর শেষভাগে ক্ষমতার যে পুনর্বিন্যাস ঘটে তা আজুচি-মোমোইয়ামা যুগ (১৫৭৩-১৬০৩) নামে পরিচিত। ১৫৮২ খ্রিস্টাব্দে ওদা নোবুনাগা নিহত হওয়ার পর তাঁর উত্তরসূরি তোয়োতোমি হিদেয়োশি ১৫৯০ খ্রিস্টাব্দে জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করেন এবং ১৫৯২ ও ১৫৯৭ খ্রিস্টাব্দে দুবার কোরিয়া আক্রমণ করেও উক্ত দেশটি জয় করতে ব্যর্থ হন। তোকুগাওয়া ইয়েয়াসু হিদেয়োশির পুত্রের অন্তর্বর্তীকালীন রাজশক্তি হিসেবে দেশ শাসন করেন। তিনি তাঁর পদ ব্যবহার করে রাজনৈতিক ও সামরিক সমর্থন যোগাড় করেন। যুদ্ধ ঘোষিত হলে তিনি ১৬০০ খ্রিস্টাব্দে সেকিগাহারার যুদ্ধে বিরুদ্ধ গোষ্ঠীগুলিকে পরাজিত করেন। ১৬০৩ খ্রিস্টাব্দে ইয়েয়াসু শোগুন নির্বাচিত হন এবং এদোতে (বর্তমান টোকিও) তোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। তোকুগাওয়া শোগুনতন্ত্র যে কয়েকটি পদক্ষেপ গ্রহণ করেছিল তার মধ্যে অন্যতম হল বুকে শোহাত্তো। এটি ছিল স্বশাসিত দাইম্যো নিয়ন্ত্রণের একটি বিধিব্যবস্থা। এবং ১৬৩৯ খ্রিস্টাব্দে বিচ্ছিন্নতাবাদী সাকোকু ("বদ্ধ দেশ") নীতিও এই সময় গৃহীত হয়। এই নীতির ফলে আড়াই শতাব্দীকাল দেশ রাজনৈতিকভাবে ঐক্যবদ্ধ ছিল। এই ঐক্যবদ্ধ যুগের নাম ছিল এদো যুগ (১৬০৩-১৮৬৮)। রানগাকু নামে পরিচিত পাশ্চাত্য বিজ্ঞান চর্চা নাগাসাকির দেজিমার ডাচ একালাগুলির সঙ্গে সম্পর্কের সূত্রে চলতে থাকে। এছাড়া এদো যুগে কোকুগাকু ("জাতীয় বিদ্যা") নামে জাপানি-কর্তৃক জাপানচর্চার সূত্রপাত ঘটেছিল। আধুনিক যুগ ১৮৫৪ সালের ৩১ মার্চ কমোডোর ম্যাথিউ পেরি ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র নৌবাহিনীর "ব্ল্যাক শিপস" কানাগাওয়া সম্মেলনে জাপানকে বহির্বিশ্বের কাছে দ্বার উন্মুক্ত করতে বাধ্য করে। বাকুমাৎসু যুগের পাশ্চাত্য দেশগুলির সঙ্গে পরবর্তী অনুরূপ চুক্তিগুলির ফলে দেশে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সঙ্কট দেখা দেয়। শোগুনের পদত্যাগের ফলে বোশিন যুদ্ধ শুরু হয় এবং সম্রাটের অধীনে নামমাত্র ঐক্যবদ্ধ (মেইজি পুনর্গঠন) কেন্দ্রীভূত রাষ্ট্র গঠিত হয়। পাশ্চাত্য রাজনৈতিক, বিচারবিভাগীয় ও সামরিক ধারণাগুলিকে গ্রহণ করে ক্যাবিনেট প্রিভি কাউন্সিল গঠন করে, মেইজি সংবিধান প্রবর্তিত হয় এবং সাম্রাজ্যের ডায়েট সংগঠিত হয়। মেইজি পুনঃস্থাপনা জাপান সাম্রাজ্যকে একটি শিল্পায়িত বিশ্বশক্তিতে পরিণত করে। অঞ্চল ও প্রভাব বিস্তারের লক্ষ্যে এর পর থেকে জাপান সামরিক সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়তে থাকে। প্রথম চীন-জাপান যুদ্ধ (১৮৯৪-১৮৯৫) ও রাশিয়া-জাপান যুদ্ধে (১৯০৪-১৯০৫) জয়লাভের পর জাপান তাইওয়ান, কোরিয়া ও শাখালিনের দক্ষিণাঞ্চল নিজ অধিকারভুক্ত করে। ১৮৭৩ সালে জাপানের জনসংখ্যা ছিল ৩৫ মিলিয়ন। এই জনসংখ্যা ১৯৩৫ সালে বেড়ে হয় ৭০ মিলিয়ন। ২০শ শতাব্দীর প্রথম দিকটি ছিল সংক্ষিপ্ত তাইশো গণতন্ত্রের যুগ। এই সময় জাপানের ক্রমবর্ধমান সম্প্রসারণবাদ ও সমরমনস্কতা কিছুটা হ্রাস পেয়েছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় বিজয়ী মিত্রশক্তি হিসেবে জাপান নিজের প্রভাব ও আঞ্চলিক কর্তৃত্ব বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়। ১৯৩১ সালে জাপান সম্প্রসারণ নীতি গ্রহণ করে মাঞ্চুরিয়া দখল করে। জাপান-কর্তৃক মাঞ্চুরিয়া অধিকার আন্তর্জাতিক মহলে নিন্দিত হলে দুই বছর পর জাপান লিগ অফ নেশনস থেকে পদত্যাগ করে। ১৯৩৬ সালে জাপান নাৎসি জার্মানির সঙ্গে অ্যান্টি-কমিনটার্ন চুক্তি সাক্ষরিত করে। ১৯৪০ সালে ত্রিপাক্ষিক চুক্তির ফলে জাপান অক্ষশক্তির অন্তর্ভুক্ত হয়। ১৯৪১ সালে জাপান সোভিয়েত-জাপান নিরপেক্ষতা চুক্তি সাক্ষর করে। ১৯৩৭ সালে জাপান সাম্রাজ্য চীনের অন্যান্য অঞ্চলে আক্রমণ চালায়। এই ঘটনা চীন-জাপান যুদ্ধ (১৯৩৭-১৯৪৫) নামে পরিচিত। জাপান সাম্রাজ্যের সেনাবাহিনী সহজেই রাজধানী নানজিং দখল করে নেয় এবং নানকিং গণহত্যা চালায়। এরপর ১৯৪০ সালে জাপান সাম্রাজ্য ফরাসি ইন্দোচীন আক্রমণ করে। এই ঘটনার পরই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র জাপানের উপর একটি তেল নিষেধাজ্ঞা স্থাপন করে। ১৯৪১ সালের ৭ ও ৮ ডিসেম্বর জাপানি বাহিনী অতর্কিতে পার্ল হারবার আক্রমণ করে, মালয়, সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে ব্রিটিশ বাহিনীকে আক্রমণ করে এবং যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয়। এর ফলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও যুক্তরাজ্য প্রশান্ত মহাসাগরে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাঙ্গনে প্রবেশ করে। ১৯৪৫ সালে মাঞ্চুরিয়ায় সোভিয়েত আক্রমণ ও হিরোশিমা ও নাগাসাকিতে পারমাণবিক বোমা বিস্ফোরণের পর ১৫ অগস্ট জাপান নিঃশর্ত আত্মসমর্পণে রাজি হয়। এই যুদ্ধের ফলে জাপান ও বৃহত্তর পূর্ব এশীয় ভূ-সম্পদ ক্ষেত্রের লক্ষাধিক মানুষের প্রাণহানি ঘটে এবং জাপানের অধিকাংশ শিল্প ও পরিকাঠামো ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। মিত্রশক্তি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে) লক্ষ লক্ষ জাপানি বংশোদ্ভুতকে উপনিবেশ ও এশিয়ার বিভিন্ন সামরিক ক্যাম্প থেকে স্বদেশে পাঠিয়ে দেয়। এর ফলে জাপান সাম্রাজ্য ধ্বংসপ্রাপ্ত হয় এবং জাপানি উপনিবেশগুলি স্বাধীনতা অর্জন করে। ১৯৪৬ সালের ৩ মে কয়েক জন যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত জাপানি সেনা আধিকারিকের বিচারের জন্য মিত্রশক্তি দূরপ্রাচ্য আন্তর্জাতিক সামরিক ট্রাইব্যুনালের আয়োজন করে। ব্যাক্টেরিওলজিক্যাল রিসার্চ ইউনিট ও সম্রাটের পরিবার যুদ্ধাপরাধে অভিযুক্ত হলেও, মিত্রশক্তির সুপ্রিম কম্যান্ডার কর্তৃক তাঁরা বিচার থেকে অব্যাহতি পান। ১৯৪৭ সালে জাপান একটি নতুন সংবিধান গ্রহণ করে। এই সংবিধানে উদারনৈতিক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার উপর জোর দেওয়া হয়। ১৯৫২সালের সান ফ্রান্সিসকোর চুক্তি বলে জাপানে মিত্রশক্তির অধিকার সমাপ্ত হয়। ১৯৫৬ সালে জাপান রাষ্ট্রসংঘের সদস্যপদ লাভ করে। এরপর জাপানে দ্রুত অর্থনৈতিক উন্নতি ঘটতে থাকে। জাপানে বিশ্বের দ্বিতীয়-বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তিতে পরিণত হয়। ১৯৯০-এর দশকের মধ্যভাগে জাপান কিছুকালের জন্য অর্থনৈতিক সঙ্কটের সম্মুখীন হয়েছিল। কিন্তু ২১শ শতাব্দীর প্রথম ভাগেই আবার জাপানে স্বাভাবিক আর্থিক বিকাশ ঘটতে শুরু করে। ২০১১ সালের ১১ মার্চ জাপানে নথিবদ্ধ ইতিহাসের সর্বাপেক্ষা শক্তিশালী ভূমিকম্পের ঘটনাটি ঘটে। এর ফলে ফুকুশিমা দাইইচি পারমাণবিক দুর্ঘটনা ঘটে। এই দুর্ঘটনা পারমাণবিক শক্তির ইতিহাসে সবচেয়ে খারাপ দুর্ঘটনাগুলির অন্যতম। সরকার ও রাজনীতি জাপান একটি সাংবিধানিক রাজতন্ত্র। এখানে সম্রাটের ক্ষমতা অত্যন্ত সীমিত। আনুষ্ঠানিক রাষ্ট্রপ্রধান হিসেবে সংবিধান তাকে "রাষ্ট্র ও জনগণের ঐক্যের প্রতীক" হিসেবে চিহ্নিত করেছে। প্রকৃত ক্ষমতা প্রধানত প্রধানমন্ত্রী ও ডায়েটের অন্যান্য নির্বাচিত সদস্যদের হাতে ন্যস্ত থাকে। দেশের সার্বভৌমত্ব জাপানি জাতির হাতে ন্যস্ত। জাপানের বর্তমান সম্রাট হলেন নারুহিতো। যুবরাজ ফুমিহিতো তার পরে চ্র্যিসানথেমাম সিংহাসনের দাবিদার। জাপানের আইনবিভাগ হল ন্যাশনাল ডায়েট বা জাতীয় আইনসভা (জাপান) । এটি টোকিওর চিয়োদায় অবস্থিত। ডায়েট একটি দ্বিকক্ষীয় আইনসভা। হাউস অফ রিপ্রেজেন্টেটিভস কক্ষটি ৪৮০ সদস্যবিশিষ্ট। এই কক্ষের সদস্যরা জনগণের ভোটে নির্বাচিত হন। এই কক্ষের মেয়াদ চার বছর বা ভেঙে না দেওয়া পর্যন্ত। অপর কক্ষ হাউস অফ কাউন্সিলরসের সদস্য সংখ্যা ২৪২। এই কক্ষের সদস্যরা জনগণের ভোটে ছয় বছরের জন্য নির্বাচিত হন। দেশের ২০ বছর বা তার বেশি বয়স্ক নাগরিকদের সার্বজনীন ভোটাধিকার স্বীকৃত। সকল নির্বাচন গোপন ব্যালটে হয়। সামাজিক উদারনৈতিক ডেমোক্রেটিক পার্টি অফ জাপান ও রক্ষণশীল লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এলডিপি) ডায়েটের প্রধান দুই দল। ১৯৫৫ সাল থেকে এলডিপি নিরবচ্ছিন্ন নির্বাচনী সাফল্য অর্জন করে আসছে (১৯৯৩ থেকে ১৯৯৪ সাল পর্যন্ত ১১ মাস এবং ২০০৯ থেকে ২০১২ সাল ব্যতিরেকে)। নিম্নকক্ষে এই দলের সদস্য সংখ্যা ২৯৪ এবং উচ্চ কক্ষে এর সদস্য সংখ্যা ৮৩। জাপানের প্রধানমন্ত্রী হলেন সরকার প্রধান। সদস্যদের মধ্যে থেকে ডায়েট কর্তৃক মনোনীত হওয়ার পর তাকে সম্রাট প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীই ক্যাবিনেটের প্রধান। তিনি রাষ্ট্রমন্ত্রীদের নিযুক্ত বা পদচ্যুত করতে পারেন। ২০১২ সালের সাধারণ নির্বাচনে এলডিপির বিপুল জয়ের পর ওই বছর ২৬ ডিসেম্বর ইয়োশিহিকো নোদাকে অপসৃত করে শিনজো আবে প্রধানমন্ত্রী হন। তিনি দেশের ৬ষ্ঠ প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ছয় বছরের জন্য শপথ নেন। ২০২০ সালে শারীরিক অসুস্থতার জন্য শিনজো আবে পদত্যাগ করলে ইয়োশিহিদে সুগা প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে সম্রাট নিযুক্ত করলেও দেশের সংবিধানে বলা হয়েছে, যাঁকে ডায়েট মনোনীত করবে, সম্রাট কেবল তাকেই প্রধানমন্ত্রী হিসেবে নির্বাচিত করতে পারবেন। অতীতে চীনা আইন দ্বারা প্রভাবিত হলেও এদো যুগে কুজিকাতা ওসাদামেগাকি প্রভৃতি গ্রন্থের মাধ্যমে জাপানি আইন ব্যবস্থা স্বতন্ত্রভাবে বিকশিত হয়ে ওঠে। যদিও ১৯শ শতাব্দীর শেষভাগ থেকে জাপানের বিচার ব্যবস্থা ইউরোপের (প্রধানত জার্মানির) ফৌজদারি আইনের ভিত্তিতে গড়ে ওঠে। উদাহরণ স্বরূপ, ১৮৯৬ সালে জাপান সরকার জার্মান বুরগারলিকস গেসেজবাচ-এর ভিত্তিতে ফৌজদারি বিধি প্রবর্তন করেন, যা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধোত্তর সংস্কার পর্যন্ত প্রচলিত ছিল। সাংবিধানিক আইনের উৎস আইনসভা। এই আইনে সম্রাটের রাবার স্ট্যাম্প থাকে। সাংবিধানিক বিধি অনুসারে, ডায়েটে পাস হওয়া আইনকে সম্রাটের অনুমোদন পেতেই হবে। তবে পাস হওয়া আইনের বিরোধিতা করার ক্ষমতা সম্রাটকে দেওয়া হয়নি। জাপানের বিচার ব্যবস্থার চারটি মৌলিক স্তরে বিভক্ত: সুপ্রিম কোর্ট ও তিন স্তরের নিম্নবর্তী আদালত। জাপানের সাংবিধানিক আইনের মূল অংশটিকে বলা হয় সিক্স কোডস। বৈদেশিক সম্পর্ক ও সামরিক বাহিনী জাপান জি-৮, অ্যাপেক, ও আসেয়ান প্লাস থ্রির সদস্য। জাপান পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলনেও অংশগ্রহণ করে থাকে। ২০০৭ সালে অস্ট্রেলিয়া এবং ২০০৮ সালের অক্টোবর মাসে ভারতের সঙ্গে জাপান নিরাপত্তা চুক্তি সাক্ষর করেছে। জাপান অফিসিয়াল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসিস্ট্যান্সের পঞ্চম বৃহত্তম দাতা। ২০১৪ সালে জাপান এতে ৯.২ বিলিয়ন মার্কিন ডলার দান করেছিল। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে জাপানের ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক ও সামরিক সম্পর্ক রয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-জাপান নিরাপত্তা জোট দেশের বিদেশনীতির মূল ভিত্তি হিসেবে কাজ করে। ১৯৫৬ সাল থেকে রাষ্ট্রসংঘের সদস্য হিসেবে জাপান মোট ২০ বছরের মেয়াদে রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদের অস্থায়ী সদস্য। জি-৪ গোষ্ঠীর সদস্য জাপান এই পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদের দাবিদার। প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে বিশেষ বিশেষ অঞ্চলের অধিকার নিয়ে জাপানের বিবাদ রয়েছে। দক্ষিণ কুরিল দ্বীপপুঞ্জের দখল নিয়ে রাশিয়ার সঙ্গে, লিয়ানকোর্ট রকসের দখল নিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে, সেনকাকু দ্বীপপুঞ্জের দখল নিয়ে চীন ও তাইওয়ানের সঙ্গে এবং ওকিনোতোরিশিমার বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চলের দখল নিয়ে চীনের সঙ্গে জাপানের বিবাদ রয়েছে। এছাড়া জাপানকে উত্তর কোরিয়ার জাপানি নাগরিক অপহরণ ও পারমাণবিক অস্ত্র ও ক্ষেপণস্ত্র কর্মসূচির সম্মুখীন হতে হয় (সিক্স-পার্টি টকস দেখুন)। জাপানের সামরিক বাজেট বিশ্বের মধ্যে অন্যতম বৃহত্তম। ইরাক যুদ্ধের সময় জাপান অ-প্রতিদ্বন্দ্বী বাহিনী পাঠিয়েছিল। কিন্তু পরে তা প্রত্যাহারও করে নেয়। জাপানের সামুদ্রিক আত্মরক্ষী বাহিনী (জেএমএসডিএফ) হল আরআইএমপিএসি মেরিটাইম এক্সারসাইজে নিয়মিত অংশগ্রহণকারী একটি বাহিনী। জাপানের সংবিধানের ৯ নং ধারা জাপানের সামরিক বাহিনীকে (জাপান আত্মরক্ষী বাহিনী) যুদ্ধ ঘোষণা বা আন্তর্জাতিক বিবাদে সামরিক বাহিনীর ব্যবহারের অধিকার থেকে বঞ্চিত করেছে। জাপান আত্মরক্ষী বাহিনী এমন একটি বাহিনী যা জাপানের বাইরে কখনও গুলি চালায়নি। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এই বাহিনী পরিচালনা করে। জাপান ভূমি আত্মরক্ষী বাহিনী (জেজিএসডিএফ), জাপান সামুদ্রিক আত্মরক্ষী বাহিনী (জেএমএসডিএফ) ও জাপান বায়ু আত্মরক্ষী বাহিনী (জেএএসডিএফ) নিয়ে এই সামরিক বাহিনী গঠিত। সাম্প্রতিককালে এই বাহিনীকে শান্তিরক্ষার কাজে ব্যবহার করা হয়েছে। ইরাকে বাহিনী প্রেরণ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর জাপানের প্রথম বিদেশে বাহিনী পাঠানোর ঘটনা। জাপান বিজনেস ফেডারেশন সরকারের কাছে অস্ত্র রফতানির উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য আবেদন জানিয়েছে, যাতে জাপান জয়েন্ট স্ট্রাইক ফাইটারের মতো বহুজাতিক প্রকল্পগুলিতে কাজ করতে পারে। ২০১৪ সালের মে মাসে প্রধানমন্ত্রী শিনযো আবে বলেছেন, জাপান দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে চলতে থাকা নেতিবাচক মনোভাব থেকে বেরিয়ে আসতে চায় এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তার জন্য আরও দায়িত্ব গ্রহণ করতে চায়। তিনি বলেছেন যে, জাপান প্রধান ভূমিকা গ্রহণ করতে চায়। তিনি প্রতিবেশী দেশগুলির দিকে জাপানের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছেন। দেশটির সঙ্গে অন্যান্য দেশের সুসম্পর্ক রয়েছে। এই দেশের পাসপোর্টে ১২২টি দেশে বিনা ভিসায় ভ্রমণ করা যায়, যা পাসপোর্ট শক্তি সূচকে ৪র্থ স্থানে রয়েছে। প্রশাসনিক বিভাগসমূহ জাপান ৪৭টি প্রিফেকচার নিয়ে গঠিত। প্রত্যেকটি প্রিফেকচারের দায়িত্বে রয়েছেন একজন নির্বাচিত গভর্নর, আইনসভা ও প্রশাসনিক আমলাতন্ত্র। প্রিফেকচারগুলি আবার মহানগর, শহর ও গ্রামে বিভক্ত। জাপানে বর্তমানে প্রশাসনিক সংযুক্তি ও পুনর্গঠন চলছে। এর মাধ্যমে অনেক মহানগর, শহর ও গ্রাম পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হচ্ছে। এই সংযুক্তির ফলে উপ-প্রিফেকচার প্রশাসনিক অঞ্চলগুলির সংখ্যা কমবে এবং সেইসঙ্গে প্রশাসনিক খরচও কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভূগোল পূর্ব এশিয়ার প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল বরাবর জাপানের মোট ৬,৮৫২টি দ্বীপ আছে। অধিকারভুক্ত দ্বীপগুলি সহ এই দেশটি ২৪° ও ৪৬° উত্তর অক্ষাংশ এবং ২২° ও ১৪৬° পূর্ব দ্রাঘিমাংশে অবস্থিত। উত্তর থেকে দক্ষিণে জাপানের প্রধান দ্বীপগুলি হল হোক্কাইডো, হোনশু, শিকোকু ও ক্যুশু। ওকিনাওয়া সহ র্যু ক্যু দ্বীপপুঞ্জ হল ক্যুশুর দক্ষিণে একটি দ্বীপমালা। এই সব দ্বীপগুলিকে একসঙ্গে জাপান দ্বীপমালা বলা হয়ে থাকে। জাপান ভূখণ্ডের ৭৩ শতাংশই বনভূমি, পার্বত্য অঞ্চল এবং কৃষি, শিল্প বা গৃহনির্মাণের অনুপযোগী। এই কারণে জনবসতি অঞ্চলগুলি, যেগুলি মূলত উপকূলীয় অঞ্চলে অবস্থিত, সেগুলি অত্যন্ত ঘন বসতিপূর্ণ। জাপান বিশ্বের সর্বাধিক জনঘনত্বপূর্ণ দেশগুলির অন্যতম। জাপানের দ্বীপগুলি প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলার আগ্নেয়গিরি অঞ্চলে অবস্থিত। দক্ষিণে মহাদেশীয় আমুরিয়ান পাত ও ওকিনাওয়া পাতের তলায় ফিলিপিন সাগর পাতের অবনমন এবং উত্তরে ওখোটস্ক পাতের তলায় প্রশান্ত মহাসাগরীয় পাতের অবনমনের ফলে কয়েক কোটি বছর ধরে মধ্য-সিলুরিয়ান থেকে প্লেইস্টোসিন যুগে সংঘটিত একটি প্রকাণ্ড মহাসাগরীয় চলন এর কারণ। জাপান প্রকৃতপক্ষে ইউরেশীয় মহাদেশের পূর্ব উপকূলের সঙ্গে যুক্ত ছিল। নিমজ্জমান পাতগুলি জাপানকে পূর্ব দিকে টেনে আনে। এর ফলে ১৫ মিলিয়ন বছর আগে জাপান সাগরের উদ্ভব ঘটে। জাপানে ১০৮টি সক্রিয় আগ্নেয়গিরি আছে। ২০শ শতাব্দীতে আরও কয়েকটি নতুন আগ্নেয়গিরির উদ্ভব হয়। এর মধ্যে হোক্কাইডোয় শোওয়া-শিনজান ও প্রশান্ত মহাসাগরের বেয়ননাইস রকসের কাছে ম্যোজিন-শো উল্লেখযোগ্য। এই দেশে প্রতি শতাব্দীতেই বিধ্বংসী ভূমিকম্প এবং তার ফলে সুনামি ঘটে থাকে। ১৯২৩ সালের টোকিয়োর ভূমিকম্পে ১৪০,০০০ জনের প্রাণহানি ঘটেছিল। সাম্প্রতিক কালের ভূমিকম্পগুলির মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১৯৯৫ সালের গ্রেট হানশিন ভূমিকম্প ও ২০১১ সালের ১১ মার্চ ৯.০ মাত্রার তোওহোকু ভূমিকম্প। শেষোক্ত ভূমিকম্পটির ফলে একটি প্রকাণ্ড সুনামি জাপানে আছড়ে পড়ে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় আগ্নেয় মেখলায় অবস্থিত হওয়ার দরুন জাপানে প্রায়শই ভূমিকম্প ও সুনামির ঘটনা ঘটে। উন্নত বিশ্বের মধ্যে জাপানই সর্বোচ্চ প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের বিপদসঙ্কুল দেশ। জলবায়ু জাপানের জলবায়ু প্রধানত নাতিশীতোষ্ণ প্রকৃতির। তবে উত্তর থেকে দক্ষিণে জলবায়ুর মধ্যে বিরাট পার্থক্য পরিলক্ষিত হয়। জাপানের ভৌগোলিক বৈশিষ্ট্যগুলি ছয়টি প্রধান জলবায়ু অঞ্চলের মধ্যে বিভাজিত হয়েছে। এগুলি হল: হোক্কাইডো, জাপান সাগর, কেন্দ্রীয় উচ্চভূমি, সেতো অন্তর্দেশীয় সাগর, প্রশান্ত মহাসাগর ও র্যু ক্যু দ্বীপপুঞ্জ। সর্ব উত্তরে অবস্থিত অঞ্চল হোক্কাইডোতে আর্দ্র মহাদেশীয় জলবায়ু দেখা যায়। এখানে শীতকাল দীর্ঘ ও শীতল এবং গ্রীষ্মকাল খুব উষ্ণ থেকে শীতল। এখানে ভারি বৃষ্টিপাত দেখা যায় না। তবে শীতকালে দ্বীপগুলি শীতকালে গভীর তুষারের চাদরে আচ্ছাদিত হয়ে যায়। জাপান সাগর অঞ্চলটি হোনশুর পশ্চিম উপকূলে অবস্থিত। এখানে উত্তরপশ্চিম শীতকালীন বায়ুর প্রভাবে ভারি তুষারপাত ঘটে। গ্রীষ্মকালে এই অঞ্চলটি প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকার তুলনায় শীতলতর থাকে। যদিও কখনও কখনও ফন বায়ুর প্রভাবে এই অঞ্চলটি অত্যধিক উষ্ণ হয়ে পড়ে। কেন্দ্রীয় উচ্চভূমি অঞ্চলে অন্তর্দেশীয় আর্দ্র মহাদেশীয় জলবায়ু লক্ষিত হয়। এখানে গ্রীষ্মে ও শীতে এবং দিনে ও রাতে তাপমাত্রার বিরাট পার্থক্য দেখা যায়। এই অঞ্চলে হালকা বৃষ্টিপাত হয়। যদিও শীতকালে সাধারণত তুষারপাত ঘটে। চুউগোকু ও শিকোকু অঞ্চলের পার্বত্য এলাকা সেতো অন্তর্দেশীয় সাগর অঞ্চলকে মৌসুমি বায়ুর হাত থেকে রক্ষা করে। ফলে এই অঞ্চলে সারা বছরই আবহাওয়া মনোরম থাকে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূল অঞ্চলে আর্দ্র উপক্রান্তীয় জলবায়ু দেখা যায়। এখানে শীতকাল তীব্র নয়। মাঝে মাঝে এখানে তুষারপাত হয়। অন্যদিকে দক্ষিণপূর্ব মৌসুমী বায়ুর প্রভাবে গ্রীষ্মকাল উষ্ণ ও আর্দ্র। র্যু ক্যু দ্বীপপুঞ্জের জলবায়ু উপক্রান্তীয় প্রকৃতির। এখানে শীতকাল উষ্ণ এবং গ্রীষ্মকাল তীব্র উষ্ণ। এই অঞ্চলে প্রধানত বর্ষাকালে অত্যন্ত ভারি বৃষ্টিপাত হয়। জাপানের গড় শীতকালীন তাপমাত্রা এবং গড় গ্রীষ্মকালীন তাপমাত্রা । জাপানের সর্বকালীন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা——নথিভুক্ত হয়েছিল ২০০৭ সালের ১৬ অগস্ট। ওকিনাওয়ায় প্রধান বর্ষা ঋতু শুরু হয় মে মাসের গোড়ার দিকে। বৃষ্টি রেখা ধীরে ধীরে উত্তর দিকে সরতে সরতে জুলাই মাসের শেষ দিকে হোক্কাইডোয় এসে উপস্থিত হয়। হোনশুর অধিকাংশ অঞ্চলে বর্ষাকাল শুরু হয় জুন মাসের মাঝামাঝি সময় এবং স্থায়ী হয় ছয় সপ্তাহের জন্য। গ্রীষ্মকালের শেষ দিকে এবং শরৎকালের গোড়ার দিকে টাইফুন ঝড় ভারি প্রায়শই ভারি বৃষ্টিপাত ঘটায়। জৈববৈচিত্র্য জাপানে নয়টি বনাঞ্চলীয় পরিবেশ অঞ্চল রয়েছে। এগুলিতে দ্বীপপুঞ্জের জলবায়ু ও ভূগোল প্রতিফলিত হয়। র্যু ক্যু ও বোনিন দ্বীপপুঞ্জে দেখা যায় ক্রান্তীয় আর্দ্র দীর্ঘপত্রী বন। প্রধান দ্বীপপুঞ্জের মনোরম জলবায়ু অঞ্চলে দেখা যায় নাতিশীতোষ্ণ দীর্ঘপত্রী ও মিশ্র বন। উত্তরের দ্বীপপুঞ্জগুলিতে শীতল অঞ্চলগুলিতে দেখা যায় নাতিশীতোষ্ণ সরলবর্গীয় বন। জাপানে বন্যপ্রাণীর ৯০,০০০ প্রজাতি দেখা যায়। এগুলির মধ্যে বাদামি ভাল্লুক, জাপানি ম্যাকাক, জাপানি র্যােককুন কুকুর ও জাপানি জায়েন্ট স্যালাম্যান্ডার উল্লেখযোগ্য। জাপানের গুরুত্বপূর্ণ উদ্ভিদ ও বন্যপ্রাণীগুলিকে রক্ষা করার জন্য জাপানে অনেকগুলি জাতীয় উদ্যান স্থাপিত হয়েছে। সেই সঙ্গে এই দেশে ৩৭টি রামসর জলাভূমিও রয়েছে। চারটি স্থান এগুলির অসাধারণ প্রাকৃতিক মূল্যের জন্য ইউনেস্কো কর্তৃক বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থানের তালিকাভুক্ত হয়েছে। পরিবেশ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর দ্রুত অর্থনৈতিক বৃদ্ধির যুগে জাপানে সরকার ও শিল্প সংস্থাগুলি পরিবেশ নীতিগুলিকে অবহেলা করেছিল। এর ফলে ১৯৫০ ও ১৯৬০-এর দশকে সেদেশে পরিবেশ দূষণ ব্যাপক আকার ধারণ করে। এর সমস্যার সমাধান কল্পে ১৯৭০ সালে সরকার কয়েকটি পরিবেশ রক্ষা আইন পাস করে। ১৯৭৩ সালের তেল সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে জাপানে শক্তির যথোপযুক্ত ব্যবহারে উৎসাহ দান শুরু হয়। উল্লেখ্য, এই দেশে প্রাকৃতিক সম্পদের অভাব রয়েছে। জাপানের বর্তমান পরিবেশ-সংক্রান্ত বিষয়গুলি হল শহরাঞ্চলের বায়ুদূষণ (এনওএক্স, সাসপেন্ডেড পার্টিকুলেট ম্যাটার ও টক্সিক্স), বর্জ্য ব্যবস্থাপন, জল ইউট্রোফিকেশন, প্রকৃতি সংরক্ষণ, জলবায়ু পরিবর্তন, রাসায়নিক ব্যবস্থাপন ও সংরক্ষণের জন্য আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। ২০১৫ সালের জুন মাসের হিসেব অনুসারে, জাপানে চল্লিশটিরও বেশি কয়লা-চালিত তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র পরিকল্পিত অথবা নির্মাণাধীন অবস্থায় রয়েছে। বেসরকারি সংস্থা ক্লাইমেট অ্যাকশন নেটওয়ার্ক "জলবায়ু-সংক্রান্ত কাজে সর্বাধিক পদক্ষেপ গ্রহণের" জন্য জাপানকে "ফসিল অফ দ্য ডে" পুরস্কার দিয়েছে। একটি জাতির পরিবেশ-রক্ষার কাজে দায়বদ্ধতা পরিমাপকারী এনভায়রনমেন্টাল পারফরম্যান্স ইনডেক্সের ২০১৪ সালের প্রতিবেদনে জাপানের স্থান ২৬তম। ক্যোটো প্রোটোকলে সাক্ষরকারী জাপান উক্ত প্রোটোকল সৃষ্টিকারী ১৯৯৭ সালের সম্মেলনের আয়োজক দেশ ছিল। বর্তমানে জাপান কার্বন ডাই-অক্সাইড ক্ষরণ কমানোর কাজ করছে এবং জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে অন্যান্য পদক্ষেপও গ্রহণ করছে। অর্থনীতি অর্থনৈতিক ইতিহাস আধুনিক জাপানের অর্থনৈতিক বিকাশ শুরু হয়েছিল এদো যুগে। এদো যুগের অধুনা বিদ্যলাম শিল্প উপাদানগুলির মধ্যে সড়ক ও জলপথ এবং ফিউচার্স কনট্র্যাক্টস, ব্যাংকিং ও ওসাকা রাইস ব্রোকারসের বিমাগুলির মতো অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলি উল্লেখযোগ্য। ১৮৬৮ সাল থেকে মেইজি যুগে জাপানের অর্থনীতি প্রসার লাভ করে। এই সময় জাপান বাজার অর্থনীতিকে গ্রহণ করেছিল। আজকের অনেক সংস্থা সেই যুগে স্থাপিত হয়েছিল। সেই সময় থেকেই জাপান এশিয়ার সর্বাধিক সর্মৃদ্ধ দেশ হিসেবে গড়ে উঠতে শুরু করে। ১৯৬০ থেকে ১৯৮০-এর দশক পর্যন্ত জাপানের সার্বিক অর্থনৈতিক বিকাশকে বলা হয় জাপানের যুদ্ধোত্তর অর্থনৈতিক বিস্ময়। এই বৃদ্ধির হার ১৯৬০ ও ১৯৭০-এর দশকে ছিল ৭.৫ এবং ১৯৮০-এর দশক ও ১৯৯০-এর দশকের গোড়ার দিকে ছিল ৩.২। ১৯৯০-এর দশকে জাপানিজ অ্যাসেট প্রাইস বাবল ও শেয়ার বাজার ও রিয়েল এস্টেট বাজার থেকে স্পেকুলেটিক এক্সেস আরোপ করার সরকারি নীতি ফলস্রুতিতে যে "লস্ট ডিকেডে"র ঘটনা ঘটে, তার ফলে আর্থিক বৃদ্ধি কিছুটা হ্রাস পেয়েছিল। বৃদ্ধির হার বাড়ানোর প্রচেষ্টা ব্যর্থ হয় এবং ২০০০ সালের বিশ্বজনীন মন্দার প্রেক্ষিতে তা আরও হ্রাস পায়। ২০০৫ সালের পর অর্থনৈতিক বৃদ্ধি আবার শুরু হয়। সেই বছরের জিডিপি বৃদ্ধির হার ছিল ২.৮%, যা সেই বছরের মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপীয় ইউনিয়ের বৃদ্ধির হারকে ছাপিয়ে যায়। ২০১২ সালের হিসেব অনুসারে, নামমাত্র জিডিপি অনুসারে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের পর জাপানই বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম জাতীয় অর্থনীতি। এবং ক্রয়ক্ষমতা সাম্যের হিসেবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, চীন ও ভারতের পর চতুর্থ বৃহত্তম জাতীয় অর্থনীতি। ২০১৩ সালের হিসেব অনুসারে, জাপানের সরকারি ঋণের পরিমাণ দেশের বার্ষিক মোট আভ্যন্তরিণ উৎপাদনের ২০০ শতাংশেরও বেশি বলে অনুমান করা হয়েছে, যা বিশ্বের দেশগুলির মধ্যে বৃহত্তম। ২০১১ সালে মুডি’জ রেটিং জাপানের দীর্ঘমেয়াদি সার্বভৌম ঋণ রেটিং এক নচকে এএ৩ থেকে কমিয়ে এএ২ করেছে দেশের ঘাটতি ও ধার করার মাত্রা অনুসারে। ২০০৯ সালে বিশ্বজনীন মন্দা এবং ২০১১ সালের মার্চে ভূমিকম্প ও সুনামির ফলে যে বিশাল বাজেট ঘাটতি ও সরকারি ঋণ বৃদ্ধি পায় তা রেটিং-এর হারকে কমিয়ে দেয়। রপ্তানি জাপানের শিল্পক্ষমতা বৃহৎ। এই দেশ বিশ্বের বৃহত্তম ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে অগ্রণী মোটরগাড়ি, ইলেকট্রনিকস, যন্ত্রাংশ, ইস্পাত ও অলৌহঘটিত ধাতু, জাহাক, রাসায়নিক দ্রব্য, বস্ত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প কেন্দ্রগুলির অন্যতম। জাপানে কৃষি ব্যবসা দেশের জমির ১৩% ব্যবহার করে। এদেশের মৎস্যচাষ সারা বিশ্বের মৎস্যচাষের প্রায় ১৫শ, যা চীনের পরে বিশ্বে দ্বিতীয় স্থানাধিকারী। ২০১০ সালের হিসেব অনুসারে, জাপানে শ্রমিক সংখ্যা ৬৫.৯ মিলিয়ন। জাপানে বেকারত্বের হার বেশ কম – প্রায় ৪%। ২০০৭ সালের হিসেব অনুযায়ী, জাপানে প্রায় ২০ মিলিয়ন লোক (জনসংখ্যার প্রায় ১৭%) দারিদ্র্যসীমার নিচে বসবাস করে। শহরাঞ্চলে স্থানাভাব জাপানে গৃহনির্মাণ শিল্পে প্রভাব ফেলেছে। ২০০৫ সালের হিসেব অনুযায়ী, জাপানের মাথাপিছু রফতানির আয় ৪,২১০ মার্কিন ডলার। ২০১২ সালের হিসেব অনুসারে, জাপানের রফতানি বাজারগুলি হল চীন (১৮.১%), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (১৭.৮%), দক্ষিণ কোরিয়া (৭.৭%), থাইল্যান্ড (৫.৫%) ও হংকং (৫.১%)। জাপান প্রধানত পরিবহন যন্ত্রাংশ, মোটরগাড়ি, লৌহ ও ইস্পাত সামগ্রী, সেমিকনডাক্টর ও গাড়ি যন্ত্রাংশ রফতানি করে। ২০১২ সালের হিসেব অনুযায়ী, জাপানের প্রধান আমদানি বাজার হল চীন (২১.৩%), মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র (৮.৮%), অস্ট্রেলিয়া (৬.৪%), সৌদি আরব (৬.২%), সংযুক্ত আরব আমিরাত (৫%), দক্ষিণ কোরিয়া (৪.৬%) ও কাতার (৪%)। আমদানি জাপানের প্রধান আমদানি দ্রব্যগুলি হল যন্ত্রপাতি, ফসিল জ্বালানি, খাদ্যদ্রব্য (প্রধানত গোমাংস), রাসায়নিক দ্রব্য, বস্ত্র ও জাপানের শিল্পগুলির কাঁচামাল। বাজার শেয়ার পরিমাপ অনুযায়ী, ওইসিডি দেশগুলির মধ্যে জাপানের আভ্যন্তরিণ বাজারই সর্বাপেক্ষা কম উন্মুক্ত। জুনিচিরো কোইজুমির প্রশাসন কিছু প্রতিযোগিতামুখী সংস্কার সাধন করেছিল এবং সেই সময় জাপানে বিদেশি বিনিয়োগ শুরু হয়েছিল। ২০১৪ ইস অফ ডুইং বিজনেস ইনডেক্স অনুসারে, ১৮৯টি দেশের মধ্যে জাপানের স্থান ২৭তম। এই দেশ উন্নত বিশ্বের ক্ষুদ্রতম আয়কর দাতা দেশগুলির একটি। জাপানের ধনতন্ত্রের অনেকগুলি স্বতন্ত্র বৈশিষ্ট্য রয়েছে: কেইরেৎসু সংস্থাগুলি প্রভাবশালী, জাপানের কার্য পরিবেশে স্থায়ী নিয়োগ ও অভিজ্ঞতা-ভিত্তিক কর্মজীবনের প্রাধান্য গুরুত্ব পায়। জাপানি কোম্পানিগুলি "টোয়োটা ওয়ে" নামে পরিচিত ব্যবস্থাপন পদ্ধতির জন্য পরিচিত। এখানে শেয়ারহোল্ডার কার্যকারিতা খুব কমই দেখা যায়। জাপানের কয়েকটি বড়ো সংস্থা হল টয়োটা, নিন্টেন্ডো, এনটিটি ডোকোমো, ক্যানন, হোন্ডা, টাকেডা ফার্মাকিউটিক্যাল, সনি, নিপ্পন ওয়েল ও সেভেন অ্যান্ড আই হোল্ডিংস কোম্পানি। বিশ্বের কয়েকটি বৃহত্তম ব্যাংক জাপানে অবস্থিত। টোকিও শেয়ার বাজার (নিক্কেই ২২৫ ও টিওপিআইএক্স ইন্ডিসেসের জন্য পরিচিত) মার্কেট ক্যাপিটালাইজেশন অনুসারে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম শেয়ার বাজার। ২০০৬ সালের হিসেব অনুসারে, জাপান ফোর্বস গ্লোবাল ২০০০ থেকে ৩২৬টি কোম্পানির দেশ, যার শতাংশ হার ১৬.৩। ২০১৩ সালে ঘোষণা করা হয়, জাপান শেল প্রাকৃতিক গ্যাস আমদানি করবে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বৈজ্ঞানিক গবেষণা, বিশেষত প্রযুক্তি, যন্ত্রবিদ্যা ও বায়োমেডিক্যাল গবেষণায় জাপান একটি অগ্রণী রাষ্ট্র। প্রায় ৭০০,০০০ গবেষক ১৩০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার গবেষণা ও উন্নয়ন বাজেটের সুবিধা পান এই দেশে। এই বাজেট বিশ্বে তৃতীয় বৃহত্তম। মৌলিক বৈজ্ঞানিক গবেষণাতেও জাপান বিশ্বে অগ্রণী একটি রাষ্ট্র। এই দেশ থেকে একুশ জন বৈজ্ঞানিক পদার্থবিদ্যা, রসায়ন বা চিকিৎসাবিদ্যায় নোবেল পুরস্কার পেয়েছেন। তিন জন ফিল্ডস মেডেল এবং একজন কার্ল ফ্রেডরিক গাস প্রাইজ পেয়েছেন। জাপানের সর্বাপেক্ষা উল্লেখযোগ্য প্রযুক্তিগত অবদানগুলি ইলেকট্রনিকস, অটোমোবাইলস, যন্ত্রবিদ্যা, ভূমিকম্প ইঞ্জিনিয়ারিং, ইন্ডাস্ট্রিয়াল রোবোট, অপটিকস, কেমিক্যালস, সেমিকন্ডাক্টরস ও ধাতুবিদ্যার ক্ষেত্রে রয়েছে। বিশ্বে রোবোটিকস উৎপাদন ও ব্যবহারে জাপান অগ্রণী। ২০১৩ সালের হিসেব অনুসারে, বিশ্বের শিল্প রোবোটগুলির ২০% (১.৩ মিলিয়নের মধ্যে ৩০০,০০০টি) জাপানে নির্মিত। যদিও আগে এই হার আরও বেশি ছিল। ২০০০ সালে সারা বিশ্বে শিল্প রোবোটগুলির অর্ধ্বাংশ ছিল জাপানে নির্মিত। জাপানের মহাকাশ সংস্থা হল জাপান এয়ারোস্পেস এক্সপ্লোরেশন এজেন্সি (জাক্সা)। এখান থেকে মহাকাশ, ভিন্ন গ্রহ ও বিমান গবেষণার কাজ চলে। রকেট ও উপগ্রহ নির্মাণেও এটি অগ্রণী সংস্থা। জাপান আন্তর্জাতিক মহাকাশ স্টেশনে অংশগ্রহণকারী। ২০০৮ সালে স্পেস শাটল অ্যাসেম্বলি ফ্লাইটের সময় সেখানে জাপানিজ এক্সপেরিমেন্ট মডিউল যুক্ত হয়। জাপানের মহাকাশ অভিযানের পরিকল্পনাগুলি হল: শুক্র গ্রহে আকাৎসুকি নামে একটি মহাকাশ যান পাঠানো; ২০১৬ সালে মারকুরি ম্যাগনেটোস্ফেরিক অরবিটার উৎক্ষেপণ; এবং ২০৩০ সালের মধ্যে চাঁদে একটি বেস গঠন। ২০০৭ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর জাপান "সেলিনে" (সেলেনোলোজিক্যাল অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং এক্সপ্লোরার) নামে একটি চন্দ্রযান একটি এইচ-আইআইএ (মডেল এইচ২এ২০২২) ক্যারিয়ার রকেটের মাধ্যমে তানেগাশিমা মহাকাশ কেন্দ্র থেকে উৎক্ষেপণ করে। অ্যাপোলো কর্মসূচির পর থেকে বৃহত্তম চন্দ্র অভিযান ছিল কাগুয়া। এর উদ্দেশ্য ছিল চাঁদের উৎস ও বিবর্তন সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ। ৪ অক্টোবর এটি চাঁদের কক্ষপথে প্রবেশ করে এবং প্রায় উচ্চতায় উড়ে যায়। এই যানটির অভিযান শেষ হয় ২০০৯ সালের ১১ জুন। এই দিন জাক্সা ইচ্ছাকৃতভাবে চাঁদের সঙ্গে এই যানটির সংঘর্ষ ঘটিয়েছিল। পরিকাঠামো যানবাহন জাপানের পরিবহন ব্যবস্থা অত্যাধুনিক এবং পরিবহন অবকাঠামো ব্যয়বহুল। জাপানে সড়ক নির্মাণে প্রচুর অর্থ ব্যয় করা হয়। সমগ্র দেশব্যাপী বিস্তৃত ১.২ মিলিয়ন কিলোমিটারের পাকারাস্তা জাপানের প্রধান পরিবহন ব্যবস্থা। জাপানে বামহাতি ট্রাফিক পদ্ধতি প্রচলিত। বড় শহরে যাতায়াতের জন্য নির্মিত সড়কসমূহ ব্যবহারের জন্য সাধারণত টোল নেয়া হয়। জাপানে বেশ কয়েকটি রেলওয়ে কোম্পানি রয়েছে। কোম্পানিগুলোর মধ্যে প্রতিযোগিতা বিদ্যমান। এসব রেল কোম্পানির মধ্যে জাপান রেলওয়েস গ্রুপ, কিনটেটসু কর্পোরেশন, সেইবু রেলওয়ে, কেইও কর্পোরেশন উল্লেখযোগ্য। এসব কোম্পানি রেল পরিবহনকে আকর্ষণীয় করার জন্য বিভিন্ন কৌশল অবলম্বন করে থাকে; যেমন- রেল স্টেশনে খুচরা দোকান স্থাপন। প্রায় ২৫০ কিলোমিটারব্যাপী বিস্তৃত শিনকানসেন জাপানের প্রধান শহরগুলোকে সংযুক্ত করেছে। এছাড়া অন্যান্য রেল কোম্পানিও সময়ানুবর্তিতার জন্য সুপরিচিত। জাপানে ১৭৩টি বিমানবন্দর রয়েছে। সবচেয়ে বড় অভ্যন্তরীণ বিমানবন্দর হল হানেদা বিমানবন্দর, এটি এশিয়ার সবচেয়ে ব্যস্ততম বিমানবন্দর। জাপানের সবচেয়ে বড় আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হল নারিতা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। অন্যান্য বড় বিমানবন্দরের মধ্যে রয়েছে কানসাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর, শুবু সেন্ট্রেয়ার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। জাপানের সবচেয়ে বড় সমুদ্র বন্দর হল নাগোয়া বন্দর। জনসংখ্যা ২০০৮ সালে জাপানের জনসংখ্যা ছিল ১২ কোটি ৭৭ লক্ষ, ফলে জাপান বিশ্বের ১০ম জনবহুল দেশ। ১৯শ শতকের শেষ দিকে এবং ২০শ শতকের শুরুর দিকে জাপানে জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি ঘটে। তবে সম্প্রতি জন্মহারের পতন এবং বিদেশ থেকে নীট অভিবাসন মোটামুটি শূন্যের কোঠায় হওয়াতে অতি সম্প্রতি, ২০০৫ সাল থেকে, জাপানের জনসংখ্যা হ্রাস পেতে শুরু করেছে। জাপানের জনগণ জাতিগতভাবে একই রকম, এখানে জনসংখ্যার ঘনত্ব অত্যন্ত বেশি এবং গড় আয়ু ৮১ বছরের কিছু বেশি, যা পৃথিবীর সর্বোচ্চগুলির একটি। ২০২৫ সাল নাগাদ ৬৫ থেকে ৮৫ বছর বয়সবিশিষ্ট নাগরিকের অংশ ৬% থেকে ১৫%-এ উন্নীত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। জাপান মূলত একটি নগরভিত্তিক রাষ্ট্র। মোট জনসংখ্যার মাত্র ৪% কৃষিকাজে নিয়োজিত। বহু কৃষক কৃষিকাজের পাশাপাশি পার্শ্ববর্তী শরহগুলিতে অতিরিক্ত কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করেন। শহুরে জনসংখ্যার প্রায় ৮ কোটি হনশু দ্বীপের প্রশান্ত মহাসাগরীয় উপকূলে এবং কিয়ুশু দ্বীপের উত্তরাংশে বসবাস করে। সবচেয়ে জনবহুল শহরগুলির মধ্যে আছে টোকিও মহানগর এলাকা (জনসংখ্যা প্রায় ১ কোটি ৩০ লক্ষ), ইয়োকোহামা (৩৬ লক্ষ), ওসাকা (২৬ লক্ষ), নাগয়া (২২ লক্ষ), সাপ্পোরো (১৮ লক্ষ), কিয়োতো (১৫ লক্ষ), কোবে (১৫ লক্ষ), কাওয়াসাকি (১৪ লক্ষ), ফুকুওকা (১৪ লক্ষ) এবং সাইতামা (১২ লক্ষ)। জাপানের ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলিতে সরু ঘিঞ্জি রাস্তা, জনাকীর্ণতা, বায়ু দূষণ এবং কিশোর অপরাধ প্রধান সমস্যা। জাপানি ভাষা জাপানের সরকারি ভাষা। এই ভাষাতে জাপানের প্রায় ৯৮% লোক কথা বলেন। এছাড়াও জাপানে স্বল্পসংখ্যক লোক (প্রায় ৭ লক্ষ) কোরীয় ভাষাতে কথা বলেন। জাপানের অধীনস্থ রিউকিউ দ্বীপপুঞ্জে রিউকিউয়ান ভাষাসমূহ প্রচলিত; এগুলিতে প্রায় ৯ লক্ষ লোক কথা বলেন। সংস্কৃতি জাপানিরা অনবরত বিদেশি সংস্কৃতি গ্রহণ করে, সেই সংগে জন্মায় তাদের নিজেদের সংস্কৃতির বৈশিষ্ট্য। খ্রিস্ট-পূর্ব চতুর্থ শতাব্দি থেকে খ্রিস্ট-পূর্ব নবম শতাব্দি পর্যন্ত খেয়ার মাধ্যমে ইউরোপ ও এশিয়ার সংস্কৃতি জাপানে প্রবেশ করে। পরে সুই রাজবংশ ও থাং রাজবংশের প্রভাবের ফলে চীনা সংস্কৃতি জাপানে প্রবেশ করে। এরপর দশম শতাব্দিতে জাপান ও অন্যান্য পূর্ব এশিয়ার দেশসমূহের সাথে যোগাযোগ কম হওয়ার কারণে জাপানে আসে তাদের নিজস্ব স্টাইলের সংস্কৃতি। ষোড়শ শতাব্দির মধ্যভাগে ইউরোপের সংস্কৃতি জাপানে প্রবেশ করে তাদের সংস্কৃতির বিরাট পতন ঘটিয়েছে। সপ্তদশ শতাব্দির পরে এডো যুগে পুনরায় আস্তে আস্তে জাপানের সংস্কৃতির উন্নয়ন হতে শুরু করে। মেইজি যুগে জাপানে পাশ্চাত্য সংস্কৃতি প্রবেশ করে জাপানের সংস্কৃতির বিরাট পরিবর্তন আসে। যেমন: ক্রীড়া, চলচ্চিত্র ইত্যাদি। কিন্তু ১৯২০ সালের পর দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলাকালীন পাশ্চাত্য সংস্কৃতি বেশ কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্বের পর মার্কিন সংস্কৃতির প্রভাবে জাপানিদের সংস্কৃতি এবং জীবনযাত্রায় ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। কিন্তু এতে করে জাপানিদের নিজস্ব প্রাচীন সংস্কৃতির মান ধীরে ধীরে হারিয়ে যাচ্ছিল। জাপানি অর্থনীতির দ্রুত উন্নয়ন হয়েছে আর এর পিছনে জাপানি অ্যানিমে এবং ইলেকট্রনিক গেম্‌সের বিরাট অবদান রয়েছে কারণ জাপানি অ্যানিমে এবং ইলেকট্রনিক গেম্‌স বিদেশের বাজারে খুব ভালো চলেছে। বর্তমানে জাপানে রয়েছে ১৪টি বিশ্ব ঐতিহ্য, তারমধ্যে ১১টি হচ্ছে সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং অবশিষ্ট ৩টি হচ্ছে প্রাকৃতিক ঐতিহ্য। ধর্ম জাপানের প্রধান দুইটি ধর্ম হলো শিন্তো ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্ম। প্রাকৃতিক শক্তিসমূহের প্রাচীন উপাসনার বিভিন্ন পৌরাণিক কাহিনী শিন্তো ধর্মের ভিত্তি। শিন্তো ধর্মে মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে কিছু বলা নেই বলে বৌদ্ধ ধর্ম ও শিন্তো ধর্ম বহু যুগ ধরে জাপানে সহাবস্থান করেছে। অনেক ক্ষেত্রে শিন্তো উপাসনালয় এবং বৌদ্ধ মন্দিরগুলি প্রশাসনিকভাবে সংযুক্ত হয়ে পড়ে। বর্তমানেও বহু জাপানি দুই ধর্মই সমানভাবে অনুসরণ করে। শিন্তো ধর্ম ১৬শ থেকে ১৯শ শতকে বিস্তার লাভ করে। মেইজি পুনঃপ্রতিষ্ঠার সময় জাপানি নেতারা শিন্তো ধর্ম গ্রহণ করেন এবং এটিকে সরকারীভাবে পৃষ্ঠপোষকতা প্রদান করে জাপানিদের মধ্যে জাতীয়তাবাদী ও দেশপ্রেমী অনুভূতি জাগিয়ে তুলতে ব্যবহার করেন। জাপানের সম্রাটকে ইশ্বরের অবতার মনে করা হত। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর শিন্তো ধর্মের জন্য সরকারি পৃষ্ঠপোষোকতা বন্ধ হয়ে যায় এবং সম্রাট দেবত্ব বিসর্জন দেন। বর্তমান জাপানিদের জীবনে শিন্তো ধর্মের কোন কেন্দ্রীয় ভূমিকা নেই। স্বল্প সংখ্যক অনুসারী বিভিন্ন শিন্তো উপাসনালয়গুলিতে যান। ঐতিহাসিকভাবে বিখ্যাত বা প্রাকৃতিক সৌন্দর্যময় উপাসনালয়গুলিতে অনেক পর্যটকেরাও বেড়াতে আসেন। এগুলিতে বহু বিবাহ অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয় এবং জন্মের পর ও অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ সময়ে শিশুদের এখানে নিয়ে আসা হয়। প্রতি বছর এগুলিকে কেন্দ্র করে অনেক উৎসব হয়। জাপানের অনেক বাসাতে শিন্তো দেবদেবীদের পূজার উদ্দেশ্যে নির্মিত একটি তাক বা স্থান থাকে। ৬ষ্ঠ শতকে জাপানে প্রথম বৌদ্ধ ধর্মের প্রচলন হয় এবং এর পরের প্রায় ১০ শতক ধরে এটি জাপানের বুদ্ধিবৃত্তিক, শৈল্পিক, সামাজিক ও রাজনৈতিক জীবনের উপর গভীর প্রভাব ফেলে। জাপানের বেশির ভাগ অন্ত্যেষ্টিক্রিয়ার দায়িত্বে থাকেন বৌদ্ধ পুরোহিতেরা। বহু জাপানি পূর্বপুরুষদের স্মরণে বৌদ্ধ মন্দিরে যায়। ৬ষ্ঠ ও ৯ম শতকের মাঝামাঝি সময়ে চীন থেকে কনফুসিয়াসবাদের আগমন ঘটে। কিন্তু বৌদ্ধধর্মের তুলনায় এর গুরুত্ব ছিল কম। ১৯শ শতকের শেষভাগ পর্যন্ত এটি জাপানে প্রাতিষ্ঠানিকভাবে বিরাজমান ছিল এবং আজও জাপানি চিন্তাধারা ও মূল্যবোধে কনফুসিয়াসের দর্শনের বড় প্রভাব দেখতে পাওয়া যায়। ১৫৪৯ সালে জাপানে খ্রিস্টধর্মের আগমন ঘটে এবং এক শতাব্দী পরে এটিকে সরকার নিষিদ্ধ করে দেন। পরে ১৯শ শতকের শেষভাগে এসে এটি আবার জাপানে উপস্থাপিত হয় এবং খুব ধীরে বিস্তার লাভ করতে থাকে। বর্তমানে জাপানে প্রায় ৩০ লক্ষ খ্রিস্টান বাস করে। বর্তমানে অনেক জাপানি বেশ কিছু নতুন নতুন ধর্মের বা বিশ্বাস ব্যবস্থার অনুসারী হওয়া শুরু করেছে, যেগুলি শিন্তো, বৌদ্ধধর্ম,থেকে ধারণা ধার নিয়েছে এবং স্থানীয় জনগণের সামাজিক চাহিদা মেটাতে গড়ে উঠেছে। এরকম নতুন ধর্মের সংখ্যা কয়েকশ'র মত। এগুলি সব মিলিয়ে কোটি কোটি জাপানি অনুসরণ করে থাকে। ক্রীড়া জাতীয় খেলা - সুমো এবং জুডো আরও দেখুন জাপান-সম্পর্কিত নিবন্ধগুলির তালিকা জাপানের রূপরেখা আনিমে অ্যানিমেক্স হায়াও মিয়াজাকি সনি তথ্যসূত্র আরও পড়ুন বহিঃসংযোগ সরকার Kantei.go.jp, official site of the Prime Minister of Japan and His Cabinet Kunaicho.go.jp, official site of the Imperial House National Diet Library Public Relations Office পর্যটন Japan National Tourist Organization সাধারণ তথ্য Japan from UCB Libraries GovPubs Japan profile from BBC News Energy Profile for Japan from the US Energy Information Administration Japan from the OECD Key Development Forecasts for the Japan from International Futures * সাংবিধানিক রাজতন্ত্র পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্র জি২০ সদস্য দ্বীপ রাষ্ট্র উদারনৈতিক গণতন্ত্র জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র উত্তর-পূর্ব এশীয় রাষ্ট্র খ্রিস্টপূর্ব ৭ম শতাব্দীতে গঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল খ্রিস্টপূর্ব ৬৬০ অব্দ জাপান আন্তঃমহাদেশীয় রাষ্ট্র ওইসিডি সদস্য সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Japan
Japan
Japan is an island country in East Asia, located in the Pacific Ocean off the northeast coast of the Asian mainland. It is bordered on the west by the Sea of Japan and extends from the Sea of Okhotsk in the north to the East China Sea in the south. The Japanese archipelago consists of four major islands—Hokkaido, Honshu, Shikoku, and Kyushu—and thousands of smaller islands, covering 377,975 square kilometres (145,937 sq mi). With a population of more than 125 million as of 2020, Japan is the 11th most populous country. Tokyo is its capital and largest city. Japan is divided into 47 administrative prefectures and eight traditional regions. About three-quarters of the country's terrain is mountainous and heavily forested, concentrating its agriculture and highly urbanized population along its eastern coastal plains. Greater Tokyo is the world's most populous metropolitan area, with more than 38 million inhabitants as of 2016. Part of the Pacific Ring of Fire, Japan's islands are prone to destructive earthquakes and tsunamis. The first known habitation of the archipelago dates to the Upper Paleolithic, with the beginning Japanese Paleolithic dating to circa 36,000 BC. Between the fourth and sixth centuries, its kingdoms were united under an emperor in Nara, and later Heian-kyō. From the 12th century, actual power was held by military dictators (shōgun) and feudal lords (daimyō), and enforced by warrior nobility (samurai). After rule by the Kamakura and Ashikaga shogunates and a century of warring states, Japan was unified in 1600 by the Tokugawa shogunate, which implemented an isolationist foreign policy. In 1853, a United States fleet forced Japan to open trade to the West, which led to the end of the shogunate and the restoration of imperial power in 1868. In the Meiji period, the Empire of Japan pursued rapid industrialization and modernization, as well as militarism and overseas colonization. In 1937, Japan invaded China, and in 1941 attacked the United States and European colonial powers, entering World War II as an Axis power. After suffering defeat in the Pacific War and two atomic bombings, Japan surrendered in 1945 and came under Allied occupation. After the war, the country underwent rapid economic growth, although its economy has stagnated since 1990. Japan is a constitutional monarchy with a bicameral legislature, the National Diet. A great power and the only Asian member of the G7, Japan has constitutionally renounced its right to declare war, but maintains one of the world's strongest militaries. A highly developed country with one of the world's largest economies, Japan is a global leader in science and technology and the automotive, robotics, and electronics industries. It has one of the world's highest life expectancies, though it is undergoing a population decline. Japan's culture is well known around the world, including its art, cuisine, film, music, and popular culture, which includes prominent comics, animation, and video game industries.
1349
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A7%87%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%AB%E0%A6%BF%E0%A6%B6
জেলিফিশ
জেলিফিশ এক ধরনের অমেরুদণ্ডী প্রাণী যাদের পৃথিবীর সব মহাসাগরে দেখতে পাওয়া যায়। নামে "ফিশ" হলেও এটি মাছ নয়; এর মেরুদণ্ড নেই। ঘণ্টাকৃতি জেলীসদৃশ প্রাণীটি প্রাণীজগতের নিডারিয়া পর্বের সিফোজোয়া শ্রেণীর অন্তর্গত। জেলিটিন সমৃদ্ধ ছাতার মত অংশ এবং ঝুলে পড়া কর্ষিকা - এ দুই অংশে প্রাণীটির দেহ গঠিত। অন্তত ৫০ কোটি বছর ধরে সাগরে এদের বাস। প্রজনন অযৌন এবং যৌন উভয় পদ্ধতিতেই এরা বংশবিস্তার করে থাকে। এদের অযৌন জনন প্রক্রিয়া দুই প্রকারে সম্পন্ন হতে পারে। যথাঃ ১। পুনরুৎপত্তি (Regeneration) ২। মুকুলোদগম (Buddin) জীবনকাল জেলিফিশের জীবনকাল কয়েক ঘণ্টা (ছোট আকারের কিছু হাইড্রোমিউডিসি (hydromedusae) থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত হতে পারে। প্রজাতিভেদে জীবনকাল ও দোহবয়ব ভিন্ন হতে পারে। বাসস্থান বেশিরভাগ জেলিফিশ সামুদ্রিক জীব হলেও স্বাদুপানিতেও কিছু (যেমন ;হাইড্রোমিউডিসি (hydromedusae)) দেখা যায়। কিছু জেলিফিশ আবার শুধু লেকেই বাস করে। যেমন পালাউ (Palau) এর জেলিফিশ হৃদে এমনটি দেখা যায়। দৈহিক গঠন জেলিফিশের দেহের মধ্যে একটি মাত্র নালী, সিলেনটেরন বা গ্যাস্ট্রোভাসকুলার গহ্বর থাকে, যা একটিমাত্র মুখছিদ্রের মাধ্যমে দেহের বাইরে উন্মুক্ত হয়। মুখছিদ্র পায়ুছিদ্রের কাজ করে। মুখছিদ্রকে ঘিরে ফাঁপা কর্ষিকা থাকে। কর্ষিকায় নির্ভোক্লাস্ট কোষ (নিমাটোসিস্ট) থাকে যা জেলিফিশকে শিকার ধরা ও আত্মরক্ষার কাজে সাহায্য করে থাকে। জেলিফিশ বহুকোষী প্রাণী। এর অনেক প্রজাতি আছে। কোনও প্রজাতির জেলিফিশের আকৃতি ওলটানো বাটির মতো, আবার কারো গঠন ঘণ্টার মতো। শরীরের কিনারা খাঁজকাটা। খাঁজকাটা অংশ থেকে বের হয়ে আসে সরু-সরু কর্ষিকা। কর্ষিকাকে বলা হয় 'টেনট্যাকল'। জেলিফিশের মুখ চারকোণা বা চতুষ্কোণ। চারকোণে থাকে চারটি বাহু। যে সমস্ত জেলিফিশের আকৃতি মাঝারি ধরনের তাদের শরীর স্বচ্ছ। এই ধরনের জেলিফিশের নাম 'আরেলিয়া'। খুব সুন্দর দেখতে লাগে এই প্রজাতির জেলিফিশদের। একটি বৃত্ত বা বোঁটার উপর এদের মুখ বসানো থাকে। মুখমণ্ডলের পরেই অবস্থান পাকস্থলীর। পাকস্থলীর নাম— 'গ্যাষ্ট্রিক পাউচ'। গা থেকে বের হয়েছে একটি নালিকাতন্ত্র, যাকে বলা হয় ক্যানাল সিস্টেম। নালিকাগুলি শরীরের বিভিন্ন অংশে ছড়িয়ে পড়েছে বিভিন্ন শাখা-প্রশাখায়। এদের শিকার ধরার কৌশল একটু অন্য ধরনের। শিকার ধরার জন্য এদের নানা ফন্দি আছে। জলের ওপর ভেসে থাকার জন্য বেলুনের মতো গোলাকার দেহ, পাতলা স্বচ্ছ আঠামত পদার্থ বের করে থাকে। এমনভাবে থাকে, যাতে মনে হয়, মাছ ধরার জাল ছড়ানো আছে। শিকড়ের মতন লম্বা বাহুকে প্রসারিত করে। কোনও কোনও জেলিফিশের জাল ৩০ থেকে ৪০ ফুট পর্যন্ত ঝুলে থাকে। মাঝারি আকারের জাল ১০ থেকে ১১ ফুট হয়। মেরুসাগর অঞ্চলের জায়ান্ট জেলিফিশ ৮ ফুট চওড়া হয় এবং তাদের জাল জলের নিচে নেমে যায় ১০০ ফুট পর্যন্ত। শিকড়ের মতো কর্ষিকায় আছে সুঁচের মতো মিহি বিষাক্ত কাটা। এই বিষাক্ত কাটার আঘাতে মাছ অবশ হয়ে পড়ে। এরপর জেলিফিশ সেই মাছ খায়। মানুষের গায়ে এই বিষাক্ত কাঁটা লাগলে ফোস্কা পড়ে যায়। এবং অসম্ভব জ্বালা করে। প্রকারভেদ বাক্স জেলিফিশ একে অনেক সময় সামুদ্রিক ভীমরুল বলেও আখ্যায়িত করা হয়। এছাড়াও একে মৃত্যুর বাক্সও বলা হয় (box of death)। এর আছে লম্বা কর্ষিকা যা নেমাটোসিস্ট ও বিষ বহন করে। এর হুলের আঘাত প্রাণঘাতী হতে পারে এবং মাত্র চার মিনিটেই শিকারকে মেরেও ফেলতে পারে অর্থ্যাৎ সাপের বিষকেও হার মানিয়ে দেয়। এগুলোর বিষ-রোধক এখনো আবিষ্কৃত হয়নি। বাস উত্তর অষ্ট্রেলিয়ায়। তথ্যসূত্র নিডেরিয়া অমেরুদণ্ডী প্রাণী
https://en.wikipedia.org/wiki/Jellyfish
Jellyfish
Jellyfish, also known as sea jellies, are the medusa-phase of certain gelatinous members of the subphylum Medusozoa, which is a major part of the phylum Cnidaria. Jellyfish are mainly free-swimming marine animals with umbrella-shaped bells and trailing tentacles, although a few are anchored to the seabed by stalks rather than being mobile. The bell can pulsate to provide propulsion for efficient locomotion. The tentacles are armed with stinging cells and may be used to capture prey and defend against predators. Jellyfish have a complex life cycle. The medusa is normally the sexual phase, which produces planula larvae. These then disperse widely and enter a sedentary polyp phase which may include asexual budding before reaching sexual maturity. Jellyfish are found all over the world, from surface waters to the deep sea. Scyphozoans (the "true jellyfish") are exclusively marine, but some hydrozoans with a similar appearance live in freshwater. Large, often colorful, jellyfish are common in coastal zones worldwide. The medusae of most species are fast-growing, and mature within a few months then die soon after breeding, but the polyp stage, attached to the seabed, may be much more long-lived. Jellyfish have been in existence for at least 500 million years, and possibly 700 million years or more, making them the oldest multi-organ animal group. Jellyfish are eaten by humans in certain cultures. They are considered a delicacy in some Asian countries, where species in the Rhizostomeae order are pressed and salted to remove excess water. Australian researchers have described them as a "perfect food": sustainable and protein-rich but relatively low in food energy. They are also used in cell and molecular biology research, especially the green fluorescent protein used by some species for bioluminescence. This protein has been adapted as a fluorescent reporter for inserted genes and has had a large impact on fluorescence microscopy. The stinging cells used by jellyfish to subdue their prey can injure humans. Thousands of swimmers worldwide are stung every year, with effects ranging from mild discomfort to serious injury or even death. When conditions are favourable, jellyfish can form vast swarms, which can be responsible for damage to fishing gear by filling fishing nets, and sometimes clog the cooling systems of power and desalination plants which draw their water from the sea.
1351
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AF%E0%A6%BF%E0%A6%B6%E0%A7%81
যিশু
যীশু (, Iēsoûs; , Yēšū́aʿ; , Yešūʿ; ; Yasūʿ বা ʿĪsā; ৪ খ্রি.পূ. – ৩০ বা ৩৩ খ্রি.), যিনি নাসরতীয় যীশু বা যীশু খ্রীষ্ট নামেও পরিচিত, ছিলেন প্রথম শতাব্দীর একজন যিহূদী ধর্মপ্রচারক ও ধর্মীয় নেতা। তিনি বিশ্বের বৃহত্তম ধর্ম খ্রীষ্টধর্মের কেন্দ্রীয় ব্যক্তিত্ব। অধিকাংশ খ্রীষ্টানদের বিশ্বাসমতে তিনি হলেন পুত্র ঈশ্বরের অবতার বা মাংসে মূর্তিমান বাক্য এবং পুরাতন নিয়মে ভাবোক্ত প্রতীক্ষিত মশীহ বা খ্রীষ্ট। প্রকৃতপক্ষে প্রাচীনকালের সমস্ত আধুনিক পণ্ডিতেরা একমত যে, যীশু ঐতিহাসিকভাবে বিদ্যমান ছিলেন, যদিও ঐতিহাসিক যীশুর খোঁজ সুসমাচারগুলোর ঐতিহাসিক নির্ভরযোগ্যতা এবং বাইবেলের নতুন নিয়মে যীশু কতটা নিবিড়ভাবে চিত্রিত হয়েছেন তা নিয়ে কিছু অনিশ্চয়তা তৈরি করেছে, কেননা যীশুর জীবনের নথিপত্র কেবল সুসমাচারগুলোতেই রয়েছে। যীশু ছিলেন একজন গালীলীয় যিহূদী, যিনি বাপ্তিস্মদাতা যোহন কর্তৃক বাপ্তিস্মিত হয়েছিলেন এবং পরিচর্যা ও প্রচারণা শুরু করেছিলেন। তার শিক্ষা প্রাথমিকভাবে মৌখিক প্রেষণ দ্বারা সংরক্ষিত ছিল এবং তিনি নিজে প্রায়ই “রব্বি” নামে অবিহিত ছিলেন। যীশু কীভাবে ঈশ্বরকে সর্বোত্তমভাবে অনুসরণ করা যায় তা নিয়ে যিহূদীদের সঙ্গে বিতর্ক করেছিলেন, নিরাময়ে নিযুক্ত হয়েছিলেন, দৃষ্টান্তের মাধ্যমে শিক্ষা প্রদান করেছিলেন এবং অনুসারীদের জড়ো করেছিলেন। ঐতিহ্য অনুসারে যিহূদী কর্তৃপক্ষ তাঁকে গ্রেফতার ও বিচার করেছিল, রোমান সরকারের কাছে হস্তান্তর করেছিল এবং রোমীয় দেশাধ্যক্ষ পন্তীয় পীলাতের নির্দেশে ক্রুশারোপণ করেছিল। তার মৃত্যুর পর তার অনুসারীরা বিশ্বাস করেছিল যে, তিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন এবং তারা যে সম্প্রদায়টি গঠন করেছিল তা অবশেষে আদি মণ্ডলীতে পরিণত হয়েছিল। জীবনী প্রাচীন ইতিহাসের সকল আধুনিক গবেষকই কার্যত স্বীকার করেছেন যে, যীশু এক ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্ব। যদিও ঐতিহাসিক যিশুর অনুসন্ধান করে সুসমাচারগুলোর ঐতিহাসিক বিশ্বাসযোগ্যতা এবং বাইবেলে চিত্রিত যিশুর সঙ্গে ঐতিহাসিক যিশুর কতটা মিল, সেই বিষয়ে খুব কম ক্ষেত্রেই মতৈক্যে উপনীত হওয়া গিয়েছে। যীশু ছিলেন একজন গালীলীয় ইহুদি। বাপ্তিস্মদাতা যোহন কর্তৃক দীক্ষিত হবার পর তিনি পরিচর্যা ও প্রচারণা শুরু করেন। তিনি মৌখিকভাবে প্রচারকার্য করতেন। প্রেরিতগণ প্রায়শই তাঁকে “রব্বি” বলে সম্মোধন করতেন। ঈশ্বরকে অনুসরণ করার ক্ষেত্রে কোন উপায়টি শ্রেষ্ঠ তা নিয়ে তিনি সঙ্গী ইহুদিদের সঙ্গে বিতর্কে অবতীর্ণ হন, রোগগ্রস্থদের আরোগ্যদান করেন, রূপক কাহিনীর মাধ্যমে শিক্ষাদান করেন এবং অনুগামীদের একত্র করেন। তাঁকে গ্রেফতার করা হয় এবং ইহুদি কর্তৃপক্ষ তার বিচার করে। তারপর তাঁকে রোমান সরকারের হাতে তুলে দেওয়া হয় এবং রোমান গভর্নর পন্তীয় পীলাতের আদেশে তাঁকে ক্রুশারোপণ করা হয়। তার অনুগামীরা বিশ্বাস করতেন, মৃত্যুর পর তিনি মৃতদের মধ্য থেকে পুনরুত্থিত হয়েছিলেন এবং তারা যে সমাজ গড়ে তুলেছিলেন সেটাই কালক্রমে আদি মণ্ডলীর রূপ নেয়। ধর্মীয় দৃষ্টিকোণ খ্রিষ্ট ধর্ম খ্রীষ্টীয় মতবাদের অন্তর্ভুক্ত বক্তব্যগুলি হল পবিত্র আত্মার প্রভাবে গর্ভধারণ করে মরিয়ম নাম্নী কুমারীর গর্ভে যীশুর জন্ম হয়, তিনি বিভিন্ন অলৌকিক কার্য সাধন করেন, খ্রীষ্টীয় মণ্ডলী প্রতিষ্ঠা করেন, মানবের পাপস্খালনের জন্য ক্রুশারোপিত হয়ে রোপণ আত্মবলিদান দিয়ে মৃত্যুবরণ করেন, মৃতদের মধ্যে থেকে পুনরুত্থিত হন, স্বর্গারোহণ করেন এবং সেখান থেকে তিনি পুনরাগমন করবেন। অধিকাংশ খ্রীষ্টান বিশ্বাস করে যে, যীশু ঈশ্বরের সঙ্গে তাঁদের পুনর্মিলন ঘটাবেন। নাইসিন ক্রিড অনুযায়ী, শারীরিক পুনরুত্থানের পূর্বে বা পরে যীশু জীবিত ও মৃতদের বিচার করবেন। খ্রীষ্টীয় পরলোকতত্ত্বে এই ঘটনাটি যীশুর দ্বিতীয় আগমনের সঙ্গে যুক্ত। খ্রীষ্টানদের একটি বড় অংশ যিশুকে ত্রিত্বের তিন ব্যক্তিত্বের দ্বিতীয় পুত্র ঈশ্বর বলে বিশ্বাস করে। তবে অল্পসংখ্যক খ্রীষ্টান শাখাসম্প্রদায় সম্পূর্ণত বা অংশত অশাস্ত্রীয় বিধায় ত্রিত্ববাদকে অস্বীকার করে। প্রতি বছর ২৫ ডিসেম্বর তারিখে (প্রাচ্যদেশীয় কয়েকটি খ্রীষ্টীয় মণ্ডলীতে জানুয়ারি মাসের ভিন্ন ভিন্ন তারিখে) বড়দিন উৎসবের মধ্য দিয়ে যীশুর জন্ম উদ্‌যাপিত হয়। তার ক্রুশারোহণের সম্মানে গুড ফ্রাইডে ও পুনরুত্থানের সম্মানে ইস্টার পালিত হয়। বহুল ব্যবহৃত পঞ্জিকা বর্ষ "খ্রিস্টাব্দ" যীশুর যথাযথপ্রায় জন্মসনের ভিত্তিতে প্রচলিত হয়েছে। ইংরেজিতে এই বর্ষের সংক্ষিপ্ত নামরূপ "এডি" কথাটি এসেছে লাতিন আন্নো দোমিনি (anno Domini, "প্রভুর সন") কথাটি থেকে। ইংরেজিতে অধুনা এই বর্ষের ভিত্তিতে "সাধারণ বর্ষ" ("সিই") ধরা হয়। ইসলাম ধর্ম খ্রিস্টধর্মের বাইরেও যিশু সম্মানিত হন। ইসলামে যিশুকে (সাধারণত ঈসা নামে উল্লিখিত) ঈশ্বরের গুরুত্বপূর্ণ নবিদের অন্যতম ও মসিহ মনে করা হয়। মুসলমানেরা বিশ্বাস করেন যে, যিশু কুমারীগর্ভে জন্মগ্রহণ করেছিলেন। আল কুরআন এ তার সাহায্যকারীদের হাওয়ারি হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে । কিন্তু তারা তাঁকে ঈশ্বর বা ঈশ্বরপুত্র বলে মানেন না। কুরআনে বলা হয়েছে যে, যিশু নিজের দৈবসত্ত্বা দাবি করতেন না। মুসলিমরা বিশ্বাস করেন না যে, তাঁকে ক্রুশবিদ্ধ করা হয়েছিল। তাঁদের মতে, ঈশ্বর তাঁকে স্ব শরীরে আসমানে তুলে নেন। এবং কিয়ামতের( বিশ্ব জগৎ ধংশ্বের) পূর্বে পুনরায় আসবেন মাসীহুদ দাজ্জাল (ভন্ড মাসীহকে) কে হত্যা করার জন্য । অন্যদিকে ইহুদিধর্ম যিশুকে প্রতীক্ষিত ত্রাণকর্তা বলে স্বীকার করে না। এই মতে, তিনি ত্রাণকর্তা-সংক্রান্ত ভবিষ্যদ্বাণীর শর্তগুলি পূরণ করেন না; তার দৈবসত্ত্বা ছিল না এবং তিনি পুনরুত্থিতও হননি। আরও দেখুন ঈসা মাসীহ (ইরানি চলচ্চিত্র) পাদটীকা ব্যাখ্যা তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জি বহিঃসংযোগ Complete Sayings of Jesus Christ in parallel Latin and English. খ্রিস্টধর্ম ইসলামের নবি রোমান সাম্রাজ্য ইহুদি দেবত্বারোপিত ব্যক্তি ধর্ম প্রবর্তক মশীহবাদ অলৌকিক ক্ষমতাধর ৩০-এর দশকে মৃত্যু কাঠমিস্ত্রি স্রষ্টা দেবতা খ্রিস্টধর্মে ঈশ্বর যিশু ইহুদি মশীহ দাবিকারী যিহূদীয় ব্যক্তি ঈশ্বরের নাম ক্রুশবিদ্ধ করে মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করা ব্যক্তি রোমান সাম্রাজ্য কর্তৃক মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তি বেথলেহেমের ব্যক্তি ত্রাণকর্তা দেবতা গৃহহীন ব্যক্তি খুনের শিকার পুরুষ
https://en.wikipedia.org/wiki/Jesus
Jesus
Jesus (c. 6 to 4 BC – AD 30 or 33), also referred to as Jesus Christ, Jesus of Nazareth, and many other names and titles, was a first-century Jewish preacher and religious leader. He is the central figure of Christianity, the world's largest religion. Most Christians believe Jesus to be the incarnation of God the Son and the awaited messiah, or Christ, a descendant from the House of David that is prophesied in the Old Testament. Virtually all modern scholars of antiquity agree that Jesus existed historically. Accounts of Jesus's life are contained in the Gospels, especially the four canonical Gospels in the New Testament. Academic research has yielded various views on the historical reliability of the Gospels and how closely they reflect the historical Jesus. Jesus was circumcised at eight days old, was baptized by John the Baptist as a young adult, and after 40 days and nights of fasting in the wilderness, began his own ministry. He was an itinerant teacher, and was often referred to as "rabbi". Jesus often debated with fellow Jews on how to best follow God, engaged in healings, taught in parables, and gathered followers, among whom twelve were appointed as his chosen apostles. He was arrested in Jerusalem and tried by the Jewish authorities, turned over to the Roman government, and crucified on the order of Pontius Pilate, the Roman prefect of Judaea. After his death, his followers became convinced that he rose from the dead, and following his ascension, the community they formed eventually became the early Christian Church that expanded as a worldwide movement. It is hypothesized that accounts of his teachings and life were initially conserved by oral transmission, which was the source of the written Gospels. Christian theology includes the beliefs that Jesus was conceived by the Holy Spirit, was born of a virgin named Mary, performed miracles, founded the Christian Church, died by crucifixion as a sacrifice to achieve atonement for sin, rose from the dead, and ascended into Heaven, from where he will return. Commonly, Christians believe Jesus enables people to be reconciled to God. The Nicene Creed asserts that Jesus will judge the living and the dead, either before or after their bodily resurrection, an event tied to the Second Coming of Jesus in Christian eschatology. The great majority of Christians worship Jesus as the incarnation of God the Son, the second of three prosopons of the Trinity. The birth of Jesus is celebrated annually, generally on 25 December, as Christmas. His crucifixion is honoured on Good Friday and his resurrection on Easter Sunday. The world's most widely used calendar era—in which the current year is AD 2024 (or 2024 CE)—is based on the approximate birthdate of Jesus. Jesus is also revered in Islam, the Baháʼí Faith, and the Druze Faith. In Islam, Jesus (often referred to by his Quranic name ʿĪsā) is considered the penultimate prophet of God and the messiah, who will return before the Day of Judgement. Muslims believe Jesus was born of the virgin Mary but was neither God nor a son of God. Most Muslims do not believe that he was killed or crucified but that God raised him into Heaven while he was still alive. In contrast, Judaism rejects the belief that Jesus was the awaited messiah, arguing that he did not fulfill messianic prophecies, was not lawfully anointed and was neither divine nor resurrected.
1352
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A7%8B%E0%A6%A8%20%E0%A6%85%E0%A6%AC%20%E0%A6%86%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%95
জোন অব আর্ক
জোন অফ আর্ক (জানুয়ারি ৬, ১৪১২ – মে ৩০, ১৪৩১) পরাধীন ফ্রান্সের মুক্তিদাত্রী বীরকন্যা এবং রূপকথাতুল্য এক নেত্রী। জান্ দার্ক(Jeanne ď Arc), যিনি ইংরেজিতে Joan Of Arc নামে পরিচিত। ইংরেজদের সঙ্গে শতবর্ষ ব্যাপী যুদ্ধের (১৩৩৭-১৪৫৩) সময় তিনি ফ্রান্সের সৈন্যবাহিনীকে নেতৃত্ব দেন। তার স্মরণে ফ্রান্সে অনেক স্মৃতিসৌধ নির্মিত হয়েছে। ১৪৩১ খ্রিস্টাব্দের ৩০ মে জোন অফ আর্ক কে আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা হয়েছিল। জন্ম মিউজ নদীর তীরে দঁরেমি গ্রামের এক সাধারণ কৃষক পরিবারে ১৪১২ সালে তিনি জন্মগ্রহণ করেন। ফ্রান্স তখন ইংরেজদের শাসনাধীন ছিল। ইংল্যান্ডের রাজা পঞ্চম হেনরির(১৩৮৭-১৪২২) পুত্র ষষ্ঠ হেনরি(১৪২১-১৪৭১) ফ্রান্সের সিংহাসনে আরোহণ করলে ফ্রান্সের রাজা সপ্তম চার্লস পালিয়ে যান। দৈববাণী শোনা এবং রাজার সাথে সাক্ষাৎ জোন লেখাপড়া জানতেন না। কথিত আছে, মাত্র তের বছর বয়সে মাঠে ভেড়ার পাল চরাবার সময় তিনি দৈববাণী শুনতে পান যে তাকে মাতৃভূমির স্বাধীনতা পুনরুদ্ধার ও ফ্রান্সের প্রকৃত রাজাকে ক্ষমতায় পূনর্বহাল করার জন্য প্রধান ভূমিকা পালন করতে হবে। এই দৈববানী তার জীবনকে আমূল পালটে দেয়। এর পর জোন অনেক চেষ্টা করে ফ্রান্সের পলাতক রাজা সপ্তম চার্লসের সঙ্গে দেখা করেন এবং দেশের স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য তার কাছে সৈন্য প্রার্থনা করেন। রাজা প্রথমে অবজ্ঞা প্রদর্শন করলেও যাজক সম্প্রদায়ের পরামর্শে জোনকে সৈন্যসাহায্য দিতে সম্মত হন। জোনের অভিযান জোন সাদা পোশাক পরিধান করে একটি সাদা ঘোড়ায় চড়ে পঞ্চক্রুশধারী তরবারি হাতে ৪০০০ সৈন্য নিয়ে ১৪২৯ সালের ২৮ এপ্রিল অবরুদ্ধ নগরী অরলেয়াঁয় প্রবেশ করেন। প্রথম আক্রমণেই তারা জয়লাভ করেন এবং এরপর তাদের একের পর এক সাফল্য আসতে থাকে। কিছুদিনের মধ্যেই তারা ইংরেজ সৈন্যদের কবল থেকে তুরেলবুরুজ শহর উদ্ধার করেন। এর পর পাতে'র যুদ্ধেও ইংরেজরা পরাজিত হয়। জুন মাসে জোন তার সৈন্যবাহিনী নিয়ে শত্রুদের ব্যূহ ভেদ করে রীইঁ(Reims) নগরী অধিকার করেন। এরপর ১৬ জুলাই সপ্তম চার্লস ফ্রান্সের রাজা হিসেবে আবার সিংহাসনে অভিষিক্ত হন এবং এভাবে জোন ফ্রান্সকে স্বাধীনতার পথে এগিয়ে দেন। জোনের মাধ্যমে ফ্রান্স ইংল্যান্ডের মধ্যকার শতবর্ষ ব্যাপী যুদ্ধ অবসান ঘটে। জোনের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও হত্যা ফ্রান্সের স্বাধীনতার পর ইংরেজরা জোনকে জব্দ করার ফন্দি আঁটতে থাকে। কঁপিঞ্যান্(Compiègne) শহরের বহির্ভাগে শত্রুসৈন্যদের ওপর আক্রমণকালে ফ্রান্সের রাজনৈতিক দল বার্গেন্ডি-কর্মীদের বিশ্বাসঘাতকতার সুযোগ নিয়ে ইংরেজরা জোনকে আটক করতে সক্ষম হয়। তারপর এক ইংরেজ পাদ্রির অধীনে তার বিচারকাজ চলে। বিচারে তার কার্যকলাপকে প্রচলিত ধর্মমতের বিরোধী আখ্যা দিয়ে তাকে 'ডাইনি' সাব্যস্ত করা হয়। আইনে এর শাস্তির বিধান ছিল জীবন্ত পুড়িয়ে মারা। এই রায় অনুসারে জোনকেও তাই ১৪৩১ খ্রিষ্টাব্দে জীবন্ত পুড়িয়ে মারা হয়। তার নির্মম হত্যাকাণ্ডের পর ফরাসিরা চিরতরে ফ্রান্সে ইংরেজদের সকল অধিকার ও চিহ্ন মুছে দেয়ার প্রয়াস পায়। পৃথিবীর ইতিহাসে জোন অফ আর্ক এক প্রেরণার নাম। ফ্রান্সের ইতিহাস খ্রিস্টধর্ম ফ্রান্সের জাতীয় প্রতীক ১৪১০-এর দশকে জন্ম ১৪৩১-এ মৃত্যু অ্যাঙ্গলিকান সাধু যুদ্ধকালীন নারী ক্রসড্রেসার খ্রিস্টধর্মের নবি
https://en.wikipedia.org/wiki/Joan_of_Arc
Joan of Arc
Joan of Arc (French: Jeanne d'Arc [ʒan daʁk]; Middle French: Jehanne Darc [ʒəˈãnə ˈdark]; c. 1412 – 30 May 1431) is a patron saint of France, honored as a defender of the French nation for her role in the siege of Orléans and her insistence on the coronation of Charles VII of France during the Hundred Years' War. Claiming to be acting under divine guidance, she became a military leader who transcended gender roles and gained recognition as a savior of France. Joan was born to a propertied peasant family at Domrémy in northeast France. In 1428, she requested to be taken to Charles VII, later testifying that she was guided by visions from the archangel Michael, Saint Margaret, and Saint Catherine to help him save France from English domination. Convinced of her devotion and purity, Charles sent Joan, who was about seventeen years old, to the siege of Orléans as part of a relief army. She arrived at the city in April 1429, wielding her banner and bringing hope to the demoralized French army. Nine days after her arrival, the English abandoned the siege. Joan encouraged the French to aggressively pursue the English during the Loire Campaign, which culminated in another decisive victory at Patay, opening the way for the French army to advance on Reims unopposed, where Charles was crowned as the King of France with Joan at his side. These victories boosted French morale, paving the way for their final triumph in the Hundred Years' War several decades later. After Charles's coronation, Joan participated in the unsuccessful siege of Paris in September 1429 and the failed siege of La Charité in November. Her role in these defeats reduced the court's faith in her. In early 1430, Joan organized a company of volunteers to relieve Compiègne, which had been besieged by the Burgundians—French allies of the English. She was captured by Burgundian troops on 23 May. After trying unsuccessfully to escape, she was handed to the English in November. She was put on trial by Bishop Pierre Cauchon on accusations of heresy, which included blaspheming by wearing men's clothes, acting upon visions that were demonic, and refusing to submit her words and deeds to the judgment of the church. She was declared guilty and burned at the stake on 30 May 1431, aged about nineteen. In 1456, an inquisitorial court reinvestigated Joan's trial and overturned the verdict, declaring that it was tainted by deceit and procedural errors. Joan has been revered as a martyr, and viewed as an obedient daughter of the Roman Catholic Church, an early feminist, and a symbol of freedom and independence. After the French Revolution, she became a national symbol of France. In 1920, Joan of Arc was canonized by the Roman Catholic Church and, two years later, was declared one of the patron saints of France. She is portrayed in numerous cultural works, including literature, music, paintings, sculptures, and theater.
1353
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A1%E0%A6%BE%E0%A6%A8
জর্ডান
জর্দান (বিকল্প বানান: জর্ডান, জর্দান, যর্ডান, যর্দান) () বা হাশেমীয় জর্দান রাজ্য (المملكة الأردنية الهاشمية আল্‌মাম্‌লাকাল্‌'উর্দুনিয়াল্‌ হাশিমিয়া) মধাপ্রাচ্যের একটি রাজতান্ত্রিক রাষ্ট্র। জর্দানের রাজবংশ নিজেদেরকে মুহাম্মাদের পিতামহ হাশেমের বংশধর বলে মনে করে। জর্দানের ভূপ্রকৃতি ঊষর মরুভূমিময়। এখানে প্রাকৃতিক সম্পদের পরিমাণও কম। কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের ইতিহাসে দেশটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পূর্বে দেশটি উসমানীয় সাম্রাজ্য এর অংশ ছিল। প্রথম বিশ্বযুদ্ধতে উসমানীয় সাম্রাজ্যের পতন ঘটলে ব্রিটিশরা অঞ্চলটি দখলে নেয়। জর্দান নদীর পূর্বতীরের ট্রান্সজর্ডান এবং পশ্চিম তীরের ফিলিস্তিন উভয়ই ব্রিটিশদের নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৯৪৬ সালে ট্রান্সজর্ডান অংশটি একটি স্বাধীন রাজ্য হিসেবে স্বীকৃতি লাভ করে। ১৯৪৯ সালে এর নাম বদলে শুধু জর্দান (জর্ডান) রাখা হয়। ইতিহাস ১৯৪৮ সালে ফিলিস্তিনের অংশবিশেষে ইসরায়েল স্বাধীনতা ঘোষণা করলে জর্দান আরও চারটি আরব রাষ্ট্রের সাথে একত্রে ইসরায়েলিদের আক্রমণ করে। যুদ্ধশেষে ইসরায়েলিরা পশ্চিম জেরুসালেম এবং জর্দানিরা পশ্চিম তীর ও পূর্ব জেরুসালেম দখলে আনে। ১৯৬৭ সালের জুন মাসে ছয় দিনের যুদ্ধে ইসরায়েল পূর্ব জেরুসালেম ও পশ্চিম তীরও দখল করে নেয়। জর্দান পশ্চিম তীরকে জর্দানের অংশ হিসেবে দাবী করতে থাকলেও স্বাধীনতাকামী ফিলিস্তিনীদের দাবির প্রেক্ষিতে ১৯৮৮ সালে জর্দানের বাদশাহ হুসেন পশ্চিম তীরের উপর থেকে জর্দানে দাবি প্রত্যাহার করে নেন। ১৯৪৬ সালের ২২ শে মার্চ ব্রিটিশ সরকার কর্তৃক স্বাক্ষরিত লন্ডনের চুক্তি এবং ট্রান্সজর্ডানের আমির উভয় দেশের সংসদ দ্বারা অনুমোদনের পর ট্রান্সজর্ডানের স্বাধীনতা স্বীকৃত। ১৯৪৬ সালের ২৫ শে মে ট্রান্সজর্ডান পার্লামেন্টে চুক্তিটি অনুমোদন করার পর ট্রান্সজর্ডান ট্রান্সজর্ডানের হাশেমাইট কিংডমের নামে একটি রাজ্যের পদে উন্নীত হন এবং আবদুল্লাহর প্রথম রাজা হিসেবে । ১৯৪২ সালের ২৬ শে এপ্রিল জর্ডানের হাশেমাইট রাজ্যের নামটি সংক্ষিপ্ত করা হয়। ১৪ ডিসেম্বর ১৯৫৫ এ জর্দান জাতিসংঘের সদস্য হয়ে ওঠে। ১৯৪৮ সালের ১৫ মে আরব-ইজরায়েল যুদ্ধের অংশ হিসাবে, জর্ডান অন্যান্য আরব রাজ্যের সাথে ফিলিস্তিন আক্রমণ করে। যুদ্ধের পর, জর্দান ওয়েস্ট ব্যাংককে নিয়ন্ত্রণ করে এবং ২৪ এপ্রিল ১৯৫০ জর্দান জেরিকো সম্মেলনের পরে জর্ডান আনুষ্ঠানিকভাবে এই অঞ্চলগুলি সংযুক্ত করে। জবাবে, কিছু আরব দেশ আরব লীগের কাছ থেকে জর্ডানকে বহিষ্কারের দাবি জানায়। ১২ জুন, ১৯২২ তারিখে আরব লীগ ঘোষণা করে যে সংযুক্তিটি একটি অস্থায়ী, ব্যবহারিক পরিমাপ এবং জর্ডান ভবিষ্যতে বসতি স্থাপনের জন্য একটি "ট্রাস্টি" হিসাবে অঞ্চলটি ধরে রেখেছিল। ১৯৫১ সালে ফিলিস্তিনি জঙ্গিদের দ্বারা আল-আকসা মসজিদে রাজা আব্দুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছিল, যার মধ্যে তিনি ইজরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তিতে স্বাক্ষর করার গুজব করেছিলেন। আব্দুল্লাহ তার পুত্র তালালের দ্বারা উত্তরাধিকারী হন, যিনি শীঘ্রই তার বড় ছেলে হোসেনের পক্ষে অসুস্থতার কারণে পদত্যাগ করেন। ১৯৫২ সালে তালাল দেশের আধুনিক সংবিধান প্রতিষ্ঠা করেন। ১৭ বছর বয়সে হুসেন সিংহাসনে আরোহণ করেন ১৯৫৩ সালে। নিম্নলিখিত সময়ের মধ্যে জর্দান মহান রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা দেখেছে। ১৯৫০-এর দশকে রাজনৈতিক উত্থান ছিল, যেমন নাসেরিজম এবং প্যান-আরবিজম আরব বিশ্বকে সরিয়ে নিয়েছিল। ১৯৫৬ সালের ১ মার্চ, রাজা হোসেন সেনাবাহিনীকে কয়েকজন সিনিয়র ব্রিটিশ অফিসারকে বরখাস্ত করে সেনাবাহিনীর কমান্ডকে আরব দেশে পরিণত করেন, যা দেশে বিদেশি প্রভাব ফেলার জন্য তৈরি করা একটি আইন। ১৯৫৮ সালে, জেরার্ড এবং প্রতিবেশী হাশেমাইট ইরাক, নাসেরের মিশর ও সিরিয়ার মধ্যে প্রতিদ্বন্দ্বী সংযুক্ত আরব প্রজাতন্ত্র গঠনের প্রতিক্রিয়া হিসাবে আরব ফেডারেশন গঠন করে। ইউনিয়নটি মাত্র ছয় মাস স্থায়ী হয়, ইরাকি রাজা ফয়সাল দ্বিতীয় (হুসেনের চাচাতো ভাই) ১৪ জুলাই ১৯৫৮ তারিখে রক্তাক্ত সামরিক অভ্যুত্থানের পর পদত্যাগ করে। জর্ডান ১৯৬৭সালের জুন মাসে ছয় দিনের যুদ্ধ শুরু করার জন্য ইজরায়েলকে মিসরে একটি পূর্ব নির্ধারিত ধর্মঘট শুরু করার আগে মিশরের সাথে সামরিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়, যেখানে জর্দান ও সিরিয়া যুদ্ধে যোগ দেয়। আরব রাষ্ট্র পরাজিত হয় এবং জর্ডান ইজরায়েলের কাছে ওয়েস্ট ব্যাংকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলে। ইজরায়েলের সঙ্গে যুদ্ধ সংঘটিত হয়েছিল, যার মধ্যে ১৯৬৮ সালে কারমির যুদ্ধ ছিল, যেখানে জর্দানীয় সশস্ত্র বাহিনী এবং প্যালেস্টাইন লিবারেশন অর্গানাইজেশন (পিএলও) এর যৌথ বাহিনী পশ্চিতীরের সঙ্গে জর্দান সীমান্তে কারম্মি ক্যাম্পে একটি ইসরায়েলি হামলা চালায়। প্যালেস্টাইনের ইজরায়েলি বাহিনীর বিরুদ্ধে সীমিত অংশগ্রহণের সত্ত্বেও, কারমির ঘটনাগুলি আরব বিশ্বের ব্যাপক স্বীকৃতি ও প্রশংসা অর্জন করে। ফলস্বরূপ, যুদ্ধের পরের সময়ের মধ্যে অন্য আরব দেশ থেকে জর্ডানের অভ্যন্তরে ফিলিস্তিনের আধা সামরিক বাহিনীর (ফেডায়িন) সমর্থন বৃদ্ধি পেয়েছিল। ফেডারেশন কার্যক্রম শীঘ্রই জর্দান শাসন আইনের হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছিল। সেপ্টেম্বর ১৯৭০ সালে, জর্ডান সেনাবাহিনী ফেদেরাইকে লক্ষ্যবস্তু করেছিল এবং ফলস্বরূপ যুদ্ধের ফলে বিভিন্ন পিএলও গ্রুপের ফিলিস্তিন যোদ্ধাদের লেবাননে পাঠানো হয়েছিল, যা একটি কালো সংঘাতের নামে পরিচিত হয়ে উঠেছিল। ১৯৭৩ সালে মিশর ও সিরিয়া ইসরাইলের উপর ইয়েম কপপুরে যুদ্ধ চালায় এবং ১৯৬৭ সালের জর্দান নদী যুদ্ধবিরতি লাইনের সাথে যুদ্ধ সংঘটিত হয়। জর্ডান সিরিয়ায় ইসরায়েলি একক আক্রমণের জন্য সিরিয়ার একটি ব্রিগেড পাঠিয়েছিল কিন্তু জর্ডান অঞ্চলের ইজরায়েলি বাহিনীকে যুক্ত করে নি। ১৯৭৪ সালে র্যাবত সম্মেলন সম্মেলনে, আরব লীগের বাকি অংশের সাথে জর্দান একমত হয়েছিলেন যে, পিএলও ফিলিস্তিনি জনগণের একমাত্র বৈধ প্রতিনিধি। তারপরে, জর্ডান ১৯৮৮ সালে ওয়েস্ট ব্যাংককে তার দাবি ত্যাগ করে। ১৯৯১ মাদ্রিদ সম্মেলনে, জর্ডান মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সোভিয়েত ইউনিয়নের পৃষ্ঠপোষকতায় শান্তি চুক্তি স্বাক্ষর করতে রাজি হয়েছিল। ইজরায়েল-জর্ডান শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল ২৬ অক্টোবর ১৯৯৪ । ১৯৯৭ সালে, ইজরায়েলি এজেন্ট কানাডিয়ান পাসপোর্ট ব্যবহার করে জর্ডানে প্রবেশ করে এবং হযরত হামাস নেতা খালেদ মেশালকে বিষাক্ত করে। ইজরায়েল বিষ বিষাক্ততা প্রদান করে এবং কিং হুসেনের শান্তি চুক্তি বাতিল করার হুমকি দেওয়ার পরে শেখ আহমেদ ইয়াসিন সহ ডজন ডজন রাজনৈতিক বন্দিকে মুক্তি দেয়। ৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৯, আবদুল্লাহ দ্বিতীয় তার পিতা হুসেনের মৃত্যুর পর সিংহাসনে আরোহণ করেন। আব্দুল্লাহ যখন সিংহাসনে অধিষ্ঠিত হন তখন অর্থনৈতিক উদারনীতির সূচনা করেন এবং তার সংস্কারের ফলে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ঘটে যা ২০০৮ সাল পর্যন্ত অব্যাহত থাকে। আব্দুল্লাহ দ্বিতীয়কে বিদেশী বিনিয়োগ বৃদ্ধি, সরকারী-বেসরকারী অংশীদারত্বের উন্নতি এবং আকাবার মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চল এবং জর্ডানের সমৃদ্ধ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) খাতের ভিত্তি প্রদানের জন্য ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি আরও পাঁচটি বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল স্থাপন করেন। যাইহোক, পরবর্তী বছরগুলিতে জর্ডানের অর্থনীতিতে কষ্টের সম্মুখীন হয়েছিল, কারণ এটি গ্রেট মরসুমের প্রভাব এবং আরব বসন্ত থেকে স্পিলভারের প্রভাব নিয়ে কাজ করেছিল। আবু মুসাব আল-জারকাভির নেতৃত্বাধীন আল-কায়েদা ৯ নভেম্বর ২০০৫ এ আম্মানে তিনটি হোটেলে লবিতে সমন্বিত বিস্ফোরণ শুরু করে, যার ফলে ৬০ জন মারা যায় এবং ১১৫ জন আহত হয়। বেসামরিক নাগরিকদের লক্ষ্যবস্তু করে বোমা হামলা, জর্ডানের জনগণের মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভ সৃষ্টি করেছে। এই হামলাটি দেশের একটি বিরল ঘটনা বলে মনে করা হয় এবং জর্ডানের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা পরে নাটকীয়ভাবে উন্নত হয়। তখন থেকে কোনও বড় সন্ত্রাসী হামলা ঘটেনি। আবদুল্লাহ এবং জর্দানকে ইজরায়েলের সাথে শান্তি চুক্তির জন্য এবং পশ্চিমের সাথে তার সম্পর্কের জন্য ইসলামী চরমপন্থীদের অবমাননা হিসাবে দেখা হয়। আরব বসন্ত ২০১১ সালে আরব বিশ্বতে অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক সংস্কারের দাবিতে ব্যাপক বিক্ষোভ দেখা দেয়। এই বেশিরভাগ বিক্ষোভ আরব রাষ্ট্রগুলিতে কয়েকটি শাসনকে ভেঙে দিয়েছে, যা হিংস্র গৃহযুদ্ধের সাথে অস্থিরতা সৃষ্টি করে। জর্দানে, ঘরোয়া অস্থিরতার প্রতিক্রিয়ায়, আবদুল্লাহ তার প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিস্থাপিত করেছিলেন এবং সংবিধান সংশোধন করা, জনসাধারণের স্বাধীনতা ও নির্বাচন পরিচালনার আইন সংশোধনসহ বেশ কয়েকটি সংস্কারের সূচনা করেছিলেন। ২০১২ সালের সাধারণ নির্বাচনে জর্দানীয় পার্লামেন্টে আনুপাতিক উপস্থাপনা পুনরায় চালু করা হয়েছিল, একটি পদক্ষেপ যা তিনি শেষ পর্যন্ত সংসদীয় সরকার প্রতিষ্ঠা করতে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ১.৪ মিলিয়ন সিরিয়ার উদ্বাস্তুদের প্রাকৃতিক সম্পদ-অভাবগ্রস্ত দেশ এবং ইসলামিক স্টেট অব ইরাক অ্যান্ড লেভান্ট (আইএসআইএল) এর উত্থান সত্ত্বেও জর্ডানকে এই অঞ্চলে সরাতে যে সহিংসতা হ্রাস পেয়েছিল তা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বঞ্চিত ছিল। রাজনীতি জর্ডানের রাজধানী রাজতান্ত্রিক শাসনকাঠামো প্রশাসনিক অঞ্চলসমূহ ভূগোল বর্তমানে জর্দানের উত্তরে সিরিয়া, পূর্বে ইরাক ও সৌদি আরব, দক্ষিণে সৌদি আরব ও আকাবা উপসাগর এবং পশ্চিমে ইসরায়েল ও পশ্চিম তীর। জর্দানের আয়তন ৮৯,৫৫৬ বর্গকিলোমিটার। আম্মান জর্দানের বৃহত্তম শহর ও রাজধানী। জর্ডান ২০০১ সালে বাংলাদেশ থেকে প্রায় ১০০,০০০০০ টাকা লোন নেয়, যা পরবর্তীতে তারা শোধ না করতে পারে নি, কিন্তু বাংলাদেশ মানবতার শিখরে দাঁড়িয়ে সেই ঋন ক্ষমা করে দেয়, পরবর্তীতে জর্ডানের অর্থনৈতিক ভাবে দাঁড়াতে বাংলাদেশ সাহায্য করেছিল জনসংখ্যা অভিবাসী এবং উদ্বাস্তু প্রায় ২১,৭৫,৪৯১ ফিলিস্তিনি শরণার্থী এখানে আছে। ২০০৩ সালে ইরাক যুদ্ধের পর ১০ লক্ষ ইরাকি জর্দানে এসেছিলেন। সংস্কৃতি শিক্ষা ব্যবস্থা জর্ডান শিক্ষা ব্যবস্থা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ এশিয়ার রাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্য জর্ডান জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র ইসলামি রাজতন্ত্র আরব লিগের সদস্য রাষ্ট্র ১৯৪৬-এ জর্ডানে প্রতিষ্ঠিত আরবিভাষী দেশ ও অঞ্চল মধ্যপ্রাচ্যের রাষ্ট্র নিকট প্রাচ্যের রাষ্ট্র ১৯৪৬-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল পশ্চিম এশিয়ার রাষ্ট্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Jordan
Jordan
Jordan, officially the Hashemite Kingdom of Jordan, is a country in the Southern Levant region of West Asia. Jordan is bordered by Syria to the north, Iraq to the east, Saudi Arabia to the south, and Israel and the occupied Palestinian West Bank to the west. The Jordan River, flowing into the Dead Sea, is located along the country's western border. Jordan has a small coastline along the Red Sea in its southwest, separated by the Gulf of Aqaba from Egypt. Amman is Jordan's capital and largest city, as well as the most populous city in the Levant. Modern-day Jordan has been inhabited by humans since the Paleolithic period. Three kingdoms emerged in Transjordan at the end of the Bronze Age: Ammon, Moab and Edom. In the third century BC, the Arab Nabataeans established their kingdom centered in Petra. Later rulers of the Transjordan region include the Assyrian, Babylonian, Roman, Byzantine, Rashidun, Umayyad, Abbasid, and the Ottoman empires. After the Great Arab Revolt against the Ottomans in 1916 during World War I, the Greater Syria region was partitioned by Britain and France. The Emirate of Transjordan was established in 1921 by the Hashemite, then Emir, Abdullah I, and the emirate became a British protectorate. In 1946, Jordan gained independence and became officially known as the Hashemite Kingdom of Jordan. The country captured and annexed the West Bank during the 1948 Arab–Israeli War until it was occupied by Israel in 1967. Jordan renounced its claim to the territory to the Palestinians in 1988, and signed a peace treaty with Israel in 1994. Jordan is a semi-arid country, covering an area of 89,342 km2 (34,495 sq mi), with a population of 11.5 million, making it the eleventh-most populous Arab country. The dominant majority, or around 95% of the country's population, is Sunni Muslim, with the rest being mostly Arab Christian. Jordan was mostly unscathed by the violence that swept the region following the Arab Spring in 2010. From as early as 1948, Jordan has accepted refugees from multiple neighbouring countries in conflict. An estimated 2.1 million Palestinian refugees, most of whom hold Jordanian citizenship, as well as 1.4 million Syrian refugees, were residing in Jordan as of 2015. The kingdom is also a refuge for thousands of Christian Iraqis fleeing persecution. While Jordan continues to accept refugees, the large Syrian influx during the 2010s has placed substantial strain on national resources and infrastructure. The sovereign state is a constitutional monarchy, but the king holds wide executive and legislative powers. Jordan is a founding member of the Arab League and the Organisation of Islamic Co-operation. The country has a high Human Development Index, ranking 99th, and is considered a lower middle income economy. The Jordanian economy, one of the smallest economies in the region, is attractive to foreign investors based upon a skilled workforce. The country is a major tourist destination, also attracting medical tourism due to its well developed health sector. Nonetheless, a lack of natural resources, large flow of refugees, and regional turmoil have hampered economic growth.
1354
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%9C%E0%A6%B0%E0%A7%8D%E0%A6%A6%E0%A6%BE%E0%A6%A8%20%E0%A6%A8%E0%A6%A6%E0%A7%80
জর্দান নদী
জর্দান নদী (বিকল্প বানান: জর্ডান নদী; ; , নাহার হা-ইয়ার্দেন; ), যা শরিয়ত নদী () নামেও পরিচিত, হলো মধ্যপ্রাচ্যের একটি নদী যা মোটামুটিভাবে গালীল সাগরের উত্তর থেকে দক্ষিণদিকে বয়ে চলে মৃত সাগরে গিয়ে পতিত হয়। নদীটির পূর্ব সীমান্তে রয়েছে জর্ডান ও গোলান মালভূমি এবং পশ্চিম সীমান্তে রয়েছে ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীর ও ইসরায়েল। জর্ডান ও পশ্চিম তীর উভয়ই নদীটির কাছ থেকে তাদের নাম গ্রহণ করে। ইহুদিধর্ম ও খ্রিস্টধর্মে নদীটির বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে কেননা বাইবেলে বলা হয়েছে যে ইস্রায়েলীয়রা এই নদী পার হয়েই প্রতিজ্ঞাত দেশে প্রবেশ করেছিল এবং বাপ্তিস্মদাতা যোহন এই নদীতেই নাসরতীয় যীশুকে বাপ্তিস্ম করেছিলেন। ভূগল ব্যুৎপত্তি ইতিহাস প্রধান পরিবেশগত সমস্যা জলরাজনীতি সড়ক, সীমান্ত ক্রসিং, সেতু জলের উৎস হিসাবে গুরুত্ব ধর্মীয় তাৎপর্য হিব্রু বাইবেল নূতন নিয়ম আহরিত সাংস্কৃতিক তাৎপর্য আরও দেখুন তথ্যসূত্র জর্ডানের নদী মধ্যপ্রাচ্য নতুন নিয়মের ভূগোল অসম্পূর্ণ এশিয়ার আন্তর্জাতিক নদী পশ্চিম তীরের সীমান্ত ইসরায়েল-জর্ডান সীমান্ত ক্যাথলিক তীর্থস্থান সিরিয়ার নদী ইসরায়েলের ভূগোল ফিলিস্তিন (অঞ্চল) এর ভূগোল ফিলিস্তিনের ভূগোল সিরিয়ার ভূগোল পশ্চিম তীরের ভূগোল মধ্যপ্রাচ্যের ভূমিরূপ পবিত্র নদী জর্ডানের পর্যটন আন্তঃসীমান্ত নদী
https://en.wikipedia.org/wiki/Jordan_River
Jordan River
The Jordan River or River Jordan (Arabic: نَهْر الْأُرْدُنّ, Nahr al-ʾUrdunn; Hebrew: נְהַר הַיַּרְדֵּן, Nəhar hayYardēn), also known as Nahr Al-Sharieat (Arabic: نهر الشريعة), is a 251-kilometre-long (156 mi) river in the Levant that flows roughly north to south through the freshwater Sea of Galilee and on to the salt water Dead Sea. The river passes by Jordan, Syria, Israel, and the Palestinian territories. Jordan and the Israeli-occupied Golan Heights border the river to the east, while Israel and the Israeli-occupied West Bank lie to its west. Both Jordan and the West Bank derive their names in relation to the river. The river holds major significance in Judaism and Christianity. According to the Bible, the Israelites crossed it into the Promised Land and Jesus of Nazareth was baptized by John the Baptist in it.
1356
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%AC%E0%A7%83%E0%A6%B9%E0%A6%B8%E0%A7%8D%E0%A6%AA%E0%A6%A4%E0%A6%BF%20%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%B0%E0%A6%B9
বৃহস্পতি গ্রহ
বৃহস্পতি গ্রহ (ইংরেজি: Jupiter জূপিটার্‌, আ-ধ্ব-ব: ˈdʒu:.pɪ.tə(ɹ)) সূর্য থেকে দূরত্বের দিক দিয়ে পঞ্চম এবং আকার আয়তনের দিক দিয়ে সৌরজগতের বৃহত্তম গ্রহ। বৃহস্পতি ব্যতীত সৌর জগতের বাকি সবগুলো গ্রহের ভরকে একত্র করলে বৃহস্পতির ভর তা থেকে আড়াই গুণ বেশি হবে। বৃহস্পতিসহ আরও তিনটি গ্রহ অর্থাৎ শনি, ইউরেনাস এবং নেপচুনকে একসাথে গ্যাস দানব বলা হয়। এই চারটির অপর জনপ্রিয় নাম হচ্ছে জোভিয়ান গ্রহ। জোভিয়ান শব্দটি জুপিটার শব্দের বিশেষণ রুপ। জুপিটারের গ্রিক প্রতিশব্দ হিসেবে ব্যবহৃত হয় জিউস। এই জিউস থেকেই জেনো- মূলটি উৎপত্তি লাভ করেছে। এই মূল দ্বারা বেশ কিছু জুপিটার তথা বৃহস্পতি গ্রহ সংশ্লিষ্ট শব্দের সৃষ্টি হয়েছে। যেমন: জেনোগ্রাফিক। পৃথিবী থেকে দেখলে বৃহস্পতির আপাত মান পাওয়া যায় ২.৮। এটি পৃথিবীর আকাশে দৃশ্যমান তৃতীয় উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক। কেবল চাঁদ এবং শুক্র গ্রহের উজ্জ্বলতা এর থেকে বেশি। অবশ্য কক্ষপথের কিছু বিন্দুতে মঙ্গল গ্রহের উজ্জ্বলতা বৃহস্পতির চেয়ে বেশি হয়ে থাকে। সুপ্রাচীনকাল থেকেই গ্রহটি জ্যোতির্বিজ্ঞানী ও জ্যোতিষীদের কাছে পরিচিত ছিল। বিভিন্ন সংস্কৃতির প্রচুর পৌরাণিক কাহিনী এবং ধর্মীয় বিশ্বাসও আবর্তিত হয়েছে বৃহস্পতিকে কেন্দ্র করে। রোমানরা গ্রহটির নাম রেখেছিল পৌরাণিক চরিত্র জুপিটারের নামে। জুপিটার রোমান পুরাণের প্রধান দেবতা। এই নামটি প্রাক-ইন্দো-ইউরোপীয় ভোকেটিভ কাঠামো থেকে এসেছে যার অর্থ ছিল আকাশের পিতা। বৃহস্পতি গ্রহের প্রাথমিক উপাদান হচ্ছে হাইড্রোজেন এবং সামান্য পরিমাণ হিলিয়াম। এতে অপেক্ষাকৃত ভারী মৌলসমূহ দ্বারা গঠিত একটি কেন্দ্রও থাকতে পারে। খুব দ্রুত ঘূর্ণনের কারণে এর আকৃতি হয়েছে কমলাকৃতির গোলকের মত, বিষুবের নিকটে ক্ষুদ্র কিন্তু চোখে পড়ার মত উল্লেখযোগ্য একটি স্ফীতি অংশ রয়েছে। বাইরের বায়ুমণ্ডল বিভিন্ন অক্ষাংশে বিভিন্ন ব্যান্ডে বিভক্ত যেগুলো বেশ সহজেই চোখে পড়ে। এ কারণে একটি ব্যান্ডের সাথে অন্য আরেকটি ব্যান্ডের সংযোগস্থলে ঝড়-ঝঞ্ঝাপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করে। এ ধরনের পরিবেশের একটি অন্যতম ফলাফল হচ্ছে মহা লাল বিন্দু (great red spot)। এটি মূলত একটি অতি শক্তিশালী ঝড় যা সপ্তদশ শতাব্দী থেকে একটানা বয়ে চলেছে বলে ধারণা করা হয়। গ্রহটিকে ঘিরে এবটি দুর্বল গ্রহীয় বলয় এবং শক্তিশালী ম্যাগনেটোস্ফিয়ার রয়েছে। সর্বশেষ তথ্য মতে, বৃহস্পতির রয়েছে ৯৫টি উপগ্রহ, যাদের মধ্যে ৪টি উপগ্রহ বৃহৎ আকৃতির। এই চারটিকে গ্যালিলীয় উপগ্রহ বলা হয়। কারণ ১৬১০ সালে গ্যালিলিও প্রথম এই চারটি উপগ্রহ আবিষ্কার করেছিলেন। সর্ববৃহৎ উপগ্রহ গ্যানিমেডের আকৃতি বুধ গ্রহের চেয়েও বেশি। বিভিন্ন সময় বৃহস্পতি গবেষণার উদ্দেশ্যে মহাশূন্য অভিযান প্রেরিত হয়েছে। পাইওনিয়ার এবং ভয়েজার প্রোগ্রামের মহাশূন্যযানসমূহ এর পাশ দিয়ে উড়ে গেছে। এর পরে গ্যালিলিও অরবিটার প্রেরিত হয়েছে। সবশেষে প্রেরিত অভিযানের নাম নিউ হরাইজন্‌স যা মূলত প্লুটোর উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরু করেছে। ২০০৭ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে এটি বৃহস্পতির নিকট দিয়ে গেছে। পরবর্তীতে ইউরোপা উপগ্রহের উদ্দেশ্যে অভিযান পাঠানোর পরিকল্পনা করা হচ্ছে। গঠন বৃহস্পতি চারটি বৃহৎ গ্যাসীয় দানবের একটি, অর্থাৎ এটি প্রাথমিকভাবে কঠিন পদার্থ দ্বারা গঠিত নয়। সৌর জগতের বৃহত্তম এই গ্রহটির ব্যাস বিষুবরেখা বরাবর ১৪২,৯৮৪ কিমি। এর ঘনত্ব ১.৩২৬ গ্রাম/সেমি³ যা গ্যাসীয় দানবগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। অবশ্য পার্থিব যেকোন গ্রহ থেকে এর ঘনত্ব কম। গ্যাসীয় দানবগুলোর মধ্যে নেপচুনের ঘনত্ব সর্বোচ্চ। গাঠনিক উপাদান বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডলের উর্দ্ধাংশের গাঠনিক উপাদানের মধ্যে রয়েছে পরমাণু সংখ্যার দিক দিয়ে ৯৩% হাইড্রোজেন ও ৭% হিলিয়াম। আর গ্যাস অণুসমূহের ভগ্নাংশের দিক দিয়ে ৮৬% হাইড্রোজেন ও ১৩% হিলিয়াম। ডানের ছকে পরিমণগুলো দেয়া আছে। হিলিয়াম পরমাণুর ভর যেহেতু হাইড্রোজেন পরমাণুর ভরের চারগুণ সেহেতু বিভিন্ন পরমাণুর ভরের অনুপাত বিবেচনায় আনা হলে শতকরা পরিমাণটি পরিবর্তিত হয়। সে হিসেবে বৃহস্পতির বায়ুমণ্ডলের গাঠনিক উপাদানের অনুপাতটি দাড়ায় ৭৫% হাইড্রোজেন, ২৪% হিলিয়াম এবং বাকি ১% অন্যান্য মৌল। অন্যদিকে অভ্যন্তরভাগ খানিকটা ঘন। এ অংশে রয়েছে ৭১% হাইড্রোজেন, ২৪% হিলিয়াম এবং ৫% অন্যান্য মৌল। এছাড়া বায়ুমণ্ডল গঠনকারী অন্যান্য মৌলের মধ্যে রয়েছে প্রাকৃতিক উপগ্রহ বৃহস্পতি গ্রহের রয়েছে (নাসা:-ন্যাশনাল অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (ইংরেজি: National Aeronautics and Space Administration (NASA)) মার্কিন সরকারের মহাকাশ-সম্পর্কিত বা জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ক অধিদপ্তর কর্তৃক মনোনীত বৃহষ্পতির পূর্বে ৭৯ টি ও বর্তমানে বৃহস্পতি গ্রহের সর্বমোট একশো এক(১০১টি) প্রাকৃতিক উপগ্ৰহ ও মনোনীত পঁচানব্বই (৯৫টি) নামকরণকৃত প্রাকৃতিক উপগ্রহ রয়েছে। এদের মধ্যে ৪৭টির ব্যাস ১০কিলোমিটারের চেয়েও কম এবং ১৯৭৫ সালের পর আবিষ্কৃত। বৃহষ্পতির সবচেয়ে বড় চারটি উপগ্রহ হলো আইয়ো, ইউরোপা, গ্যানিমেড এবং ক্যালিস্টো, এদেরকে গ্যালিলীয় উপগ্রহ বলা হয়ে থাকে আবিষ্কারকের নামানুসারে এবং বৃহস্পতি গ্রহের প্রাকৃতিক উপগ্ৰহ গুলো নামকরণ করেন নাসার একটি শাখা (আইএইউ:-ইন্টারন্যাশনাল অ্যাস্ট্রোনমিক্যাল ইউনিয়ন, ইংরেজি:IAU: International Astronomical Union) থেকে দেওয়া হয়। নিম্নে ৯৫টি বৃহস্পতিগ্ৰহের প্রাকৃতিক উপগ্রহসমূহ হলো: মেটিস (Metis) অ্যাড্রাস্টিয়া (Adrastea) অ্যামালথিয়া (Amalthea) থীবী (Thebe) আইয়ো (Io) ইউরোপা (Europa) গ্যানিমেড (Ganymede) ক্যালিস্টো (Callisto) থেমিস্টো (Themisto) লেডা (Leda) হিমালিয়া (Himalia) লিসিথিয়া (Lysithea) ইলারা (Elara) ডিয়া (Dia) কার্পো (Carpo) ইউপোরি (Euporie) থেলক্সিনোই (Thelxinoe) ইউয়ান্থে (Euanthe) হেলিক (Helike) ওর্থোসাই (Orhtosie) লোকাস্ট (Locaste) প্র্যাক্সিডিক (Praxidike) হার্পালিক (Harpalyke) নেম (Mneme) হার্মিপ্পাস(Hermippus) থাইয়োন (Thyone) অ্যানানকি (Ananke) হার্স (Herse) অ্যাল্টন (Altne) কেল (Kale) টাইগেট (Taygete) ইরিনোম (Erinome) অ্যাওয়েড (Aoede) ক্যালিকোর (Kallichore) ক্যালাইক (Kalyke) কার্ম (Carme) ক্যালিরহো (Callirrhoe) ইউরিডোম (Eurydome) প্যাসিথি (Pasithee) কোর (Kore) সাইলিন (Cyllene) প্যাসিফা (Pasiphae) হেজেমোন (Hegemone) আর্ক (Arche) আইসোনো (Isonoe) সিনোপ (Sinope) স্পোন্ড (Sponde) অতনয় (Autonoe) মেগাক্লাইট (Megaclite) এরসা(Ersa) কলিররো(Calliro) অটোনো(Autono) আইরিন(Eirene) আইওকাস্ট(Iocast) আইত্নে(Aitne) অর্থোসিই(Orthosie) ফিলোফ্রোসাইন(Philophrosyne) চ্যান্ডেন(Chaldene) স্কন্দ(Sponde) ভ্যালেটুডো(Valetudo) ইউফেম(Euphem) পান্ডিয়া(pandia) হারপালকে(Harpalke) কালাইকে(Kalaike) ইউকেলেড(Eukelade) S/2010 J1 S/2010 J2 S/2016 J1 S/2003 J18 S/2011 J2 S/2017 J1 S/2003 J19 S/2017 J2 S/2017 J3 S/2017 J5 S/2017 J6 S/2017 J7 S/2017 J8 S/2017 J9 S/2011 J1 S/2003 J2 S/2003 J4 S/2003 J9 S/2003 J10 S/2003 J12 S/2003 J16 S/2011 J3 S/2016 J3 S/2016 J4 S/2018 J2 S/2018 J3 S/2022 J2 S/2022 J3 S/2018 J4 S/2021 J1 S/2021 J2 S/2021 J3 S/2021 J4 S/2021 J5 S/2021 J6 S/2022 J1 তথ্যসূত্র বৃহস্পতি সৌরজগতের গ্রহ প্রাচীনকাল থেকে জ্ঞাত জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক বস্তু
https://en.wikipedia.org/wiki/Jupiter
Jupiter
Jupiter is the fifth planet from the Sun and the largest in the Solar System. It is a gas giant with a mass more than 2.5 times that of all the other planets in the Solar System combined and slightly less than one-thousandth the mass of the Sun, and is about ten times larger than Earth and smaller than the Sun. Jupiter orbits the Sun at a distance of 5.20 AU (778.5 Gm), with an orbital period of 11.86 years. It is the third brightest natural object in the Earth's night sky, after the Moon and Venus, and has been observed since prehistoric times. Its name derives from that of Jupiter, the chief deity of ancient Roman religion. Jupiter was the first of the sun's planets to form, and its inward migration during the primordial phase of the Solar System affected much of the formation history of the other planets. Hydrogen constitutes 90% of Jupiter's volume, followed by helium, which forms 25% of its mass and 10% of its volume. The ongoing contraction of Jupiter's interior generates more heat than the planet receives from the Sun. Its internal structure is believed to consist of an outer mantle of fluid metallic hydrogen and a diffuse inner core of denser material. Because of its rapid rate of rotation, one turn in ten hours, Jupiter is an oblate spheroid; it has a slight but noticeable bulge around the equator. The outer atmosphere is divided into a series of latitudinal bands, with turbulence and storms along their interacting boundaries; the most obvious result of this is the Great Red Spot, a giant storm that has been recorded since at least 1831. Jupiter is surrounded by a faint system of planetary rings and has a powerful magnetosphere, the second largest contiguous structure in the Solar System (after the heliosphere). Jupiter forms a system of 95 known moons and probably many more, including the four large moons discovered by Galileo Galilei in 1610: Io, Europa, Ganymede, and Callisto. Ganymede, the largest of the four, is larger than the planet Mercury. Callisto is the second largest; Io and Europa are each about the size of Earth's Moon. Since 1973, Jupiter has been visited by nine robotic probes: seven flybys and two dedicated orbiters, with one more en route and one awaiting launch.
1357
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A7%81%E0%A6%B2
কাবুল
কাবুল (, ; ; ; ) পূর্ব-মধ্য আফগানিস্তানের একটি শহর এবং কাবুল প্রদেশ ও আফগানিস্তানের রাজধানী। শহরটি কাবুল নদীর তীরে সমুদ্রতল থেকে ১৮০০ মিটার উচ্চতায় অবস্থিত। কাবুল আফগানিস্তানের প্রধান অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। আফগানিস্তান ও পাকিস্তানের মধ্যবর্তী পর্বতাঞ্চলের একটি গুরুত্বপূর্ণ গিরিপথ খাইবার গিরিপথের কাছে অবস্থিত বলে কাবুল শহর সামরিক কৌশলগত দিক থেকেও গুরুত্বপূর্ণ। শহরে বস্ত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, রাসায়নিক ও কাষ্ঠজাত দ্রব্য উৎপাদন করা হয়। কাবুলে বসবাসরত জাতিগুলির মধ্যে তাজিক জাতির লোকেরা সংখ্যাগরিষ্ঠ। তবে পশতুন জাতির লোকেরা সংখ্যালঘু জাতি হলেও গুরুত্বপূর্ণ। ইতিহাস কাবুল একটি প্রাচীন লোকালয় হলেও ১৫০৪ সালে এসে এটি প্রথম গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। ঐ বছর ভারতীয় মুঘল সাম্রাজ্যের প্রতিষ্ঠাতা সম্রাট বাবর শহরটিকে তাঁর রাজধানী বানান। ১৫২৬ সালে দিল্লীতে সাম্রাজ্যের রাজধানী স্থানান্তরিত করা হলেও কাবুল মুঘল সাম্রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ শহর ছিল। ১৭৩৮ সালে পারস্যের শাসক নাদির শাহ শহরটি দখল করেন। ১৭৪৭ সালে আফগানিস্তানের প্রথম আমীর আহমদ শাহ কাবুলকে আফগানিস্তানের দুইটি রাজধানীর একটি বানান। অপর রাজধানীটি ছিল দক্ষিণের কান্দাহার শহর। ১৭৭৩ সালে আহমদ শাহের মৃত্যুর পর কাবুল দেশের একমাত্র রাজধানীতে পরিণত হয়। ঊনবিংশ শতকে খাইবার গিরিপথের নিয়ন্ত্রণের জন্য শহরটি ব্রিটিশ, পারসিক ও রুশদের দ্বন্দ্বের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়। এই শতকে ব্রিটিশ সেনারা দুইবার (১৮৩৯-১৮৪২ এবং ১৮৭৯-১৮৮০) কাবুল দখল করে। ১৯৪০ সালের পর শিল্পকেন্দ্র হিসেবে কাবুলের বিকাশ ঘটে। বর্তমান কালে ১৯৭৯ সাল থেকে ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত সোভিয়েত সেনারা কাবুলের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ১৯৯২ সালের শুরুতে মুজাহেদিনদের বিভিন্ন দল কাবুল দখলে নেয়। ১৯৯৬ সালে তালিবান নামের একটি চরমপন্থি ইসলামি আন্দোলন দুই বছর প্রচেষ্টার পর শহরটি দখল করে এবং আফগান সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেয়। ২০০১ সালের নভেম্বর মাসে উত্তরের জোট বা যুক্তফ্রন্ট তালিবানদের হাত থেকে কাবুল পুনরুদ্ধার করে। ২০২১ সালের ১৫ ই আগস্ট পুনরায় কাবুল পুনরুদ্ধার করে তালেবান। পুরনো সরকারকে উৎখাত করে সেখানে তারা নতুন করে ইসলামিক আমিরাত তথা তালিবানি সরকার প্রতিষ্ঠা করেছে। কাবুল সহ পুরো আফগানিস্তানে তালেবান ইসলামী শাসনব্যবস্থা তথা "আফগানিস্তান ইসলামী আমিরাত" প্রতিষ্ঠা করেছে। ভূগোল কাবুল দেশের পূর্ব অংশে, একটি সরু উপত্যকায় অবস্থিত। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে এর গড় উচ্চতা ১,৭৯১ মিটার (৫,৮৭৬ ফুট)। এটি কাবুল নদীর তীরে হিন্দুকুশ পর্বতমালার মধ্যে আবদ্ধ। পুরনো শহরের দক্ষিণে অবিলম্বে প্রাচীন শহরের দেয়াল এবং শের দরজা পাহাড় রয়েছে যার পিছনে শুহাদাই সালিহিনের কবরস্থান রয়েছে। আরও কিছুটা পূর্ব দিকে হল প্রাচীন বাল হিসার দুর্গ, যার পিছনে রয়েছে কোল-ই হাসমত খান হ্রদ। এর অবস্থানটিকে "পাহাড় দ্বারা ঘেরা বাটি" হিসাবে বর্ণনা করা হয়েছে। কিছু পাহাড় হল (যাকে কোহ বলা হয়) এর মধ্যে রয়েছে: খায়ের খান-ই শামালি, খাজা রাওয়াশ, সখী বারান তে, চিহিল সুতুন, কুরুগ, খাজা রাজাক এবং শের দরজা। পশ্চিম কাবুলে শহুরে অঞ্চলের মধ্যে দুটি পাহাড় রয়েছে: আসামায়ি (এটি টেলিভিশন পাহাড় হিসাবেও পরিচিত) এবং আলী আবাদ। শহরের মধ্যে পাহাড়ের মধ্যে (যাকে তপা বলা হয়) বিবি মাহরো এবং মারজান অন্তর্ভুক্ত। শহরটি আয়তন ১,০২৩ বর্গকিলোমিটার (৩৯৫ বর্গ মাইল)। এটি এ পর্যন্ত দেশের বৃহত্তম হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এর নিকটতম বিদেশি রাজধানী শহরগুলি হলো ইসলামাবাদ, দুশানবে, তাশখন্দ, নয়াদিল্লি এবং বিশকেক । কাবুল ইস্তাম্বুল (পশ্চিম এশিয়া) এবং হ্যানয়ের (পূর্ব এশিয়া) মোটামুটি সমান দূরত্বে অবস্থিত। কাবুলের শীতকালীন বৃষ্টিপাত (প্রায় একচেটিয়াভাবে তুষার হিসাবে পতিত হয়) এবং বসন্তের মাসে শীতকালে বৃষ্টিপাতের সাথে শীতল আধা-শুষ্ক আবহাওয়া (কপেন জলবায়ু শ্রেণিবিন্যাস বিএসকে) থাকে। দক্ষিণ এশিয়ার বেশিরভাগ অঞ্চলের তুলনায় তাপমাত্রা শীতল, মূলত শহরের উচ্চতা বৃদ্ধির কারণে। গ্রীষ্মে খুব কম আর্দ্রতা থাকে, যা উত্তাপ থেকে মুক্তি দেয়। শরৎকালে উষ্ণ দুপুর এবং তীব্র শীতল সন্ধ্যায় বৈশিষ্ট্যযুক্ত। শীতকালের জানুয়ারির দৈনিক গড় তাপমাত্রা −২.৩ °সে (২৭.৯ °ফা) থাকে। বসন্ত বছরের আর্দ্রতম সময়। রৌদ্রের পরিস্থিতি বছরব্যাপী আধিপত্য বিস্তার করে। বার্ষিক গড় তাপমাত্রা ১২.১ °সে (৫৩.৮ °ফা), আফগানিস্তানের অন্যান্য বড় শহরগুলির তুলনায় অনেক কম। জনসংখ্যা ২০১৯ সালে হিসাব অনুযায়ী কাবুলের জনসংখ্যা অনুমান করা হয়েছিল ৪.১১৪ মিলিয়ন। আরও একটি ২০১৫ সালের অনুমানে জনসংখ্যা ৩,৬৭৮,০৩৪ ছিল বলে ধারণ করা হয়। যুদ্ধের কারণে শহরের জনসংখ্যা হ্রাস-বৃদ্ধি ঘটেছে। শহরের জনসংখ্যার প্রায় ৭৪% সুন্নি ইসলামকে অনুসরণ করে এবং ২৫% শিয়া (মূলত হাজারারা) ইসলামকে অনুসরণ করে। অবশিষ্ট ১% অনুসারী শিখ এবং হিন্দুধর্ম ধর্মালম্বী হিসেবে পরিচিত, সেইসাথে খ্রিস্টান বাসিন্দা (ফার্স্ট লেডি রুলা গণি) এবং ইহুদি বাসিন্দাও (জ্যাবলন সিমিনটোব) রয়েছে। অন্যান্য খ্রিস্টানরাও রয়েছে তবে তারা অ-আফগান এবং স্থায়ী বাসিন্দাদের চেয়ে বেশিরভাগ আন্তর্জাতিক সংস্থায় কর্মী। কাবুলে ছোট ভারতীয় এবং তুর্কি সম্প্রদায়ও রয়েছে (বেশিরভাগ ব্যবসায়-মালিক এবং বিনিয়োগকারী), এবং ১৯৮০ এর দশকে একটি বিশাল রুশ সম্প্রদায় ছিল। প্রশাসন ও আইন ব্যবস্থা শহরের পূর্ব প্রান্তে পুল-ই-চরখি দেশের সবচেয়ে বড় কারাগার। এটি নির্যাতন ও মৃত্যুদণ্ডের জন্য কুখ্যাত। আফগানিস্তানের ন্যাশনাল আর্মির ২০১তম বাহিনী পুল-ই-চরখির কাছাকাছি অবস্থিত। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ১৯৩২ সালে প্রতিষ্ঠিত কাবুল বিশ্ববিদ্যালয় দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ উচ্চশিক্ষা বিদ্যাপীঠ। ১৯৯২ সালের যুদ্ধে এটি বন্ধ হয়ে যায়। দর্শনীয় স্থান আফগানিস্তান জাতীয় জাদুঘর যা কাবুলের মিউজিয়াম নামে পরিচিত, আফগানিস্তানের কাবুল শহরের কেন্দ্রের ৯ কিমি দক্ষিণপশ্চিমাঞ্চলে অবস্থিত একটি দ্বিতল ভবন জাদুঘর । পরিবহণ আফগানিস্তানে কাবুলের শহরতলী থেকে ৫ কিলোমিটার উত্তরে হামিদ কারজাই আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর অবস্থিত। এটি দেশের প্রধান আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর এবং সর্বাধিক সামরিক ঘাঁটির অন্যতম হিসাবে স্বীকৃত । তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ কাবুল শহরের মানচিত্র What's On In Kabul (pdf format) কাবুলের ঐতিহাসিক ছবি কাবুলের গল্প কাবুলের কাফেলা Kabul - City of Light, 9 Billion dollar modern urban development project Sada-e Azadi Radio/TV/Newspaper (ISAF) People of Kabul - report by Radio France Internationale in English Kabul travel guide from Wikivoyage আফগানিস্তান আফগানিস্তানের শহর খ্রিস্টপূর্ব ২য় সহস্রাব্দের স্থাপনা এশিয়ার রাজধানী রেশম পথের উপর অবস্থিত জনবহুল স্থান কাবুল প্রদেশের জনবহুল স্থান
https://en.wikipedia.org/wiki/Kabul
Kabul
Kabul is the capital city of Afghanistan. Located in the eastern half of the country, it is also a municipality, forming part of the Kabul Province. The city is divided for administration into 22 municipal districts. In 2023 its population was estimated to be 4.95 million people. In contemporary times, Kabul has served as Afghanistan's political, cultural and economical center. Rapid urbanisation has made it the country's primate city and the 75th-largest city in the world. The modern-day city of Kabul is located high in a narrow valley in the Hindu Kush mountain range, and is bounded by the Kabul River. At an elevation of 1,790 metres (5,873 ft), it is one of the highest capital cities in the world. The center of the city contains its old neighborhoods, including the areas of Khashti Bridge, Khabgah, Kahforoshi, Deh-Afghanan, Chandavel, Shorbazar, Saraji and Baghe Alimardan. Kabul is said to be over 3,500 years old, and was mentioned at the time of the Achaemenid Persian Empire. Located at a crossroads in Asia—roughly halfway between Istanbul, Turkey, in the west and Hanoi, Vietnam, in the east—the city is situated in a strategic location along the trade routes of Central Asia and South Asia. It was a key destination on the ancient Silk Road and was traditionally seen as the meeting point between Tartary, India and Persia. Over the centuries Kabul has been under the rule of various dynasties and empires, including the Seleucids, Bactrian Greeks, Mauryans, the Kushans, the Hindu Shahis, Western Turks, the Turk Shahis, the Samanids, the Khwarazmians, the Timurids, the Mongols and the Arman Rayamajhis. In the 16th century, the Mughal Empire used Kabul as a summer capital, during which time it prospered and increased in significance. It briefly came under the control of the Afsharids following Nader Shah's invasion of India, until finally coming under local rule by the Afghan Empire in 1747. Kabul became the capital of Afghanistan in 1776 during the reign of Timur Shah Durrani (a son of Ahmad Shah Durrani). In the 19th century the city was occupied by the British: after establishing foreign relations and agreements, they withdrew from Afghanistan and returned to British India. Kabul is known for its historical gardens, bazaars, and palaces such as the Gardens of Babur, Darul Aman Palace and the Arg. In the second half of the 20th century, the city became a stop on the hippie trail undertaken by many Europeans and gained the nickname "Paris of Central Asia". This period of tranquility ended in 1978 with the Saur Revolution, and the subsequent Soviet military intervention in 1979 which sparked a 10-year Soviet–Afghan War. The 1990s were marked by civil wars between splinter factions of the disbanded Afghan mujahideen which destroyed much of the city. In 1996, Kabul was captured by the Taliban after four years of intermittent fighting. The Taliban-ruled city fell to the United States after the American-led invasion of Afghanistan which followed the September 11 attacks in the US in 2001. In 2021, Kabul was re-occupied by the Taliban following the withdrawal of American-led military forces from Afghanistan.
1358
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%B9%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A6%BF%20%E0%A6%AE%E0%A6%B0%E0%A7%81%E0%A6%AD%E0%A7%82%E0%A6%AE%E0%A6%BF
কালাহারি মরুভূমি
কালাহারি (ইংরেজি: Kalahari, আফ্রিকান্স: Dorsland বা তৃষ্ণার্ত অঞ্চল) আফ্রিকার দক্ষিণাঞ্চলের মালভূমিতে অবস্থিত একটি অববাহিকার মত সমতল ভূমি। বতসোয়ানার প্রায় পুরো অঞ্চল, নামিবিয়ার পূর্বাঞ্চলীয় এক তৃতীয়াংশ এবং দক্ষিণ আফ্রিকার নর্দার্ন কেইপ প্রদেশের সর্ব উত্তরের অংশটুকু এর মধ্যে পড়ে। দক্ষিণ-পশ্চিমে এটি নামিবিয়ার উপকূলবর্তী নামিব মরুভূমির সাথে মিলিত হয়। কালাহারি উত্তর দক্ষিণে সর্বোচ্চ ১০০০ মাইল পর্যন্ত দীর্ঘ এবং পূর্ব পশ্চিমে এর সর্বোচ্চ দৈর্ঘ্য প্রায় ৬০০ মাইল, মোট ক্ষেত্রফল প্রায় ৩৬০,০০০ বর্গমাইল তথা ৯৩০,০০০ বর্গকিলোমিটার। তথ্যসূত্র নামিবিয়ার মরুভূমি বোতসোয়ানার মরুভূমি দক্ষিণ আফ্রিকার মরুভূমি
https://en.wikipedia.org/wiki/Kalahari_Desert
Kalahari Desert
The Kalahari Desert is a large semi-arid sandy savanna in Southern Africa extending for 900,000 square kilometres (350,000 sq mi), covering much of Botswana, as well as parts of Namibia and South Africa. It is not to be confused with the Angolan, Namibian, and South African Namib coastal desert, whose name is of Khoekhoegowab origin and means "vast place".
1359
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%82%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B0%E0%A7%81
ক্যাংগারু
ক্যাংগারু ম্যাক্রোপডিডায়ী গোত্রের এক প্রকারের স্তন্যপায়ী প্রাণী। এদের কেবলমাত্র অস্ট্রেলিয়া ও প্রতিবেশী দ্বীপগুলিতে দেখা যায়। এরা পিছনের দুই পায়ের উপর লাফিয়ে লাফিয়ে চলে। মার্সুপিয়াল বলে ক্যাঙ্গারুরা অপরিণত বাচ্চার জন্ম দেয়। বাচ্চাগুলি মায়ের পেটের থলিতে থেকে বড় হয়। দুইটি জীব পরিবারে ক্যাঙ্গারুর প্রায় ৫০টি ভিন্ন প্রজাতি আছে। বড় ক্যাঙ্গারুগুলি ম্যাক্রোপোডিডে পরিবারের অন্তর্ভুক্ত। এদের মধ্যে আছে লাল ক্যাঙ্গারু, ধূসর ক্যাঙ্গারু, ওয়ালাবি, প্যাডিমেলন এবং কুওক্কা। অন্য পরিবারটির নাম পোটোরইডে। এই পরিবারে ইঁদুর-ক্যাঙ্গারু, বেটং এবং পোটোরু অন্তর্ভুক্ত। লাল ও ধূসর ক্যাঙ্গারু আকারে সবচেয়ে বড় হয়। এরা লম্বায় ২ মিটার দীর্ঘ এবং ৮৫ কেজি ওজনের হতে পারে। সবচেয়ে ছোট ক্যাঙ্গারু হল ইঁদুর-ক্যাঙ্গারু। এরা লম্বায় লেজ বাদে এক ফুটের মত হয়। ক্যাঙ্গারু কেবল অস্ট্রেলিয়ার মূল ভূখন্ডে, নিউ গিনিতে, এবং আশেপাশের দ্বীপগুলিতে, যেমন তাসমানিয়াতে পাওয়া যায়। অন্য কিছু দেশে ক্যাঙ্গারু নিয়ে যাওয়া হয়েছে। যেমন নিউজিল্যান্ডে টাম্মার এবং হাওয়াইতে ওয়ালাবির বসতি স্থাপন করানো হয়েছে। ক্যাঙ্গারুরা অস্ট্রেলিয়া ও নিউগিনির প্রায় সর্বত্র দেখতে পাওয়া যায়। লাল ও ধূসর ক্যাঙ্গারু তৃণভূমি, সাভানা, এবং উন্মুক্ত বনাঞ্চলে দেখতে পাওয়া যায়। রক ওয়ালাবিগুলি দক্ষিণের মরুভূমিতে উল্লম্ব পাহাড়ের দেয়াল ঘেঁষে বাস করে। বেটংগুলি ঊষর অঞ্চলে গর্ত খুঁড়ে বাস করে। গেছো ক্যাঙ্গারু অতিবৃষ্টি অরণ্যের গাছের উঁচু অংশে বাস করে, আর ইঁদুর-ক্যাঙ্গারুগুলি একই অরণ্যের মাটির ঝোপঝাড়গুলিতে ঘুরে বেড়ায়। লাল-গলাবিশিষ্ট ওয়ালাবিগুলি বিভিন্ন বসতিতে বাস করে, যার মধ্যে আছে তাসমানিয়ার পর্বতগুলির বরফময় শৃঙ্গ। বিপন্ন কুওক্কাগুলি এখন কেবল অস্ট্রেলিয়ার দক্ষিণ-পশ্চিমের দুইটি দ্বীপে দেখতে পাওয়া যায়। অনেক ক্যাঙ্গারু প্রজাতির অভিযোজনের ক্ষমতা প্রবল। এরা উন্মুক্ত পার্ক, বাগান, এমনকি গল্‌ফ কোর্সেও বাসা গাড়ে। ফসিলের নমুনা থেকে অনুমান করা হয় যে ক্যাঙ্গারুরা প্রায় ১৫ মিলিয়ন বছর আগে, মায়োসিন যুগে, অস্ট্রেলিয়াতে আসে। ৮ মিলিয়ন বছর আগে জলবায়ুর পরিবর্তনের কারণে অস্ট্রেলিয়ার অতিবৃষ্টি অরণ্যগুলির জায়গায় উন্মুক্ত বনাঞ্চল ও সাভানা তৃণভূমির আবির্ভাব ঘটে, ফলে ক্যাঙ্গারুরাও বিবর্তিত হয়ে বর্তমানে আমাদের পরিচিত নানা প্রজাতিতে রূপ নেয়। আদি ক্যাঙ্গারুগুলি ছিল বিশালাকার। এরা প্রায় ১০ ফুট লম্বা ও প্রায় ২০০ কেজি ভারী ছিল। জোসেফ ব্যাংকের ১৭৭০ সালের ১২ই জুলাইয়ে ডায়রির পাতায় ক্যাঙ্গারু কথাটার প্রথম দেখা পাওয়া যায়। বর্তমানে যেখানে কুকটাউন অবস্থিত সেখানে ক্যাপ্টেন কুকের জাহাজ গ্রেট ব্যারিয়ার রিফের সঙ্গে সংঘর্ষে ক্ষতিগ্রস্ত হয়। জাহাজ মেরামতির জন্য সাত সপ্তাহের জন্য তাদের সেখানে থাকতে হয়েছিল। জোসেফ ব্যাংক ও ক্যাপ্টেন কুক এখানে ক্যাঙ্গারু দেখতে পান। একটা গল্প প্রচলিত আছে যে , তারা এক আদিবাসীকে প্রাণিটার নাম জানতে চান । সেই আদিবাসী বলেন "ক্যাঙ্গারু" অর্থাৎ "আমি তোমাদের কথা বুঝতে পারছি না"। কুক ও তার সঙ্গী ভাবে প্রাণিটার নাম বুঝি ক্যাঙ্গারু। এইভাবে ক্যাঙ্গারু নামটা সভ্য সমাজে প্রচলিত হয়ে যায়। চিত্রশালা তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ The Kangaroo Genome Project at Australian National University Courtship and Mating Prehistoric mammals স্তন্যপায়ী প্রাণী ওশেনিয়ার প্রাণিকুল স্তন্যপায়ী পরিবার জন অ্যাডওয়ার্ড গ্রে কর্তৃক নামকরণকৃত ট্যাক্সা
https://en.wikipedia.org/wiki/Macropodidae
Macropodidae
Macropodidae is a family of marsupials that includes kangaroos, wallabies, tree-kangaroos, wallaroos, pademelons, quokkas, and several other groups. These genera are allied to the suborder Macropodiformes, containing other macropods, and are native to the Australian continent (the mainland and Tasmania), New Guinea and nearby islands.
1360
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%95%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%A8%E0%A7%8D%E0%A6%B8%E0%A6%BE%E0%A6%B8
ক্যান্সাস
ক্যান্সাস () মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি অঙ্গরাজ্য। এর রাজধানী টোপিকা এবং বৃহত্তম শহর উইচিটা, এর সর্বাধিক জনবহুল কাউন্টি এবং বৃহত্তম কর্মসংস্থান কেন্দ্র জনসন কাউন্টি । ক্যানসাসের উত্তরে নেব্রাস্কা সীমানা; পূর্ব দিকে মিসৌরি ; দক্ষিণে ওকলাহোমা ; এবং পশ্চিমে কলোরাডো । ক্যান্সাসের নাম ক্যান্সাস নদীর নামানুসারে, যার ফলস্বরূপ কানসা স্থানীয় আমেরিকানরা যারা এর তীরে বাস করত তাদের নামকরণ করা হয়েছিল। হাজার হাজার বছর ধরে, এখন যা কানসাসে রয়েছে তা প্রচুর এবং বিচিত্র স্থানীয় আমেরিকান উপজাতির বাসস্থান ছিল। রাজ্যের পূর্বাঞ্চলে উপজাতিরা সাধারণত নদীর উপত্যকাসহ গ্রামে বাস করত। রাজ্যের পশ্চিম অঞ্চলে উপজাতিরা আধা যাযাবর এবং বিশাল পশু বাইসন শিকার করত। আরও দেখুন ক্যান্সাসের রূপরেখা - কানসাস সম্পর্কিত বিষয়গুলির সংগঠিত তালিকা কানসাস সম্পর্কিত নিবন্ধগুলির সূচি তথ্যসূত্র গ্রন্থ-পঁজী ; 559 pages. ; 535 pages. ; 1204 pages. ; 5 volumes; 2731 pages; (Vol1), (Vol2), (Vol3), (Vol4), (Vol5); the 1919 edition contains additional biographies. ; 369 pages. ; 3 volumes; 2723 pages; (Vol1), (Vol2), (Vol3) ; 610 pages. ; 3 volumes; 1616 pages; (Hathi Trust) (Google Books) ; 366 pages; (Google Books) বহিঃসংযোগ কানসাস রাজ্য কানসাস ভ্রমণ এবং পর্যটন বিভাগ কানসাস হিস্টোরিকাল সোসাইটি কানসাস মেমোরি - কানসাস হিস্টোরিকাল সোসাইটির দেওয়া নথি, ফটোগ্রাফ এবং অন্যান্য প্রাথমিক উৎস কানসাস স্টেট এজেন্সি ডেটাবেসস - কানসাস রাজ্য এজেন্সিগুলির দ্বারা উৎপাদিত অনুসন্ধানযোগ্য ডাটাবেসের তালিকাভুক্ত তালিকা ইউএসজিএস রিয়েল-টাইম, ভৌগোলিক এবং কানসাসের অন্যান্য বৈজ্ঞানিক সংস্থানসমূহ ইউএসডিএ থেকে কানসাস রাজ্য তথ্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের অঙ্গরাজ্য কানসাস
https://en.wikipedia.org/wiki/Kansas
Kansas
Kansas ( KAN-zəss) is a landlocked state in the Midwestern region of the United States. It borders Nebraska to the north; Missouri to the east; Oklahoma to the south; and Colorado to the west. Kansas is named after the Kansas River, in turn named after the Kansa people. Its capital is Topeka, and its most populous city is Wichita, however the largest urban area is the bi-state Kansas City, MO–KS metropolitan area. For thousands of years, what is now Kansas was home to numerous and diverse Indigenous tribes. The first settlement of non-indigenous people in Kansas occurred in 1827 at Fort Leavenworth. The pace of settlement accelerated in the 1850s, in the midst of political wars over the slavery debate. When it was officially opened to settlement by the U.S. government in 1854 with the Kansas–Nebraska Act, conflict between abolitionist Free-Staters from New England and pro-slavery settlers from neighboring Missouri broke out over the question of whether Kansas would become a free state or a slave state, in a period known as Bleeding Kansas. On January 29, 1861, Kansas entered the Union as a free state, hence the unofficial nickname "The Free State". Passage of the Homestead Acts in 1862 brought a further influx of settlers, and the booming cattle trade of the 1870s attracted some of the Wild West's most iconic figures to western Kansas. As of 2015, Kansas was among the most productive agricultural states, producing high yields of wheat, corn, sorghum, and soybeans. In addition to its traditional strength in agriculture, Kansas possesses an extensive aerospace industry. Kansas, which has an area of 82,278 square miles (213,100 square kilometers) is the 15th-largest state by area, the 36th most-populous of the 50 states, with a population of 2,940,865 according to the 2020 census, and the 10th least densely populated. Residents of Kansas are called Kansans. Mount Sunflower is Kansas's highest point at 4,039 feet (1,231 meters).
1361
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%AC%E0%A6%A8
গ্যাবন
গ্যাবন (, ; ; ) সরকারি নাম গ্যাবনীয় প্রজাতন্ত্র ( ) মধ্য আফ্রিকার পশ্চিমে অবস্থিত একটি রাষ্ট্র। এর উত্তর-পশ্চিমে বিষুবীয় গিনি , উত্তরে ক্যামেরুন, পূর্বে ও দক্ষিণে কঙ্গো প্রজাতন্ত্র ও পশ্চিমে আটলান্টিক মহাসাগর। গ্যাবনের আয়তন ২৬৭,৬৬৭ বর্গকিমি। লিব্রভিল হল দেশের রাজধানী ও বৃহত্তম শহর। এটি ১৯৬০ সালের ১৭ আগস্ট ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা লাভ করে। এরপর থেকে আজ পর্যন্ত মাত্র দুইজন স্বৈরশাসক দেশটি শাসন করেছেন। ৯০- এর দশকের শুরুতে বহুদলীয় ব্যবস্থা প্রবর্তন করা হয় এবং একটি নতুন গণতান্ত্রিক সংবিধান পাস করা হয়। দেশটির জনসংখ্যা খুবই কম (২০ লক্ষ)। এখানে প্রচুর প্রাকৃতিক সম্পদ আছে এবং অনেক বিদেশী বিনিয়োগও ঘটেছে এবং এর ফলে গ্যাবন আফ্রিকার সবচেয়ে সমৃদ্ধ দেশগুলির একটি হয়েছে। এর মানব উন্নয়ন সূচক আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে শীর্ষে। ২০২৩ সালের ২৬ আগস্ট একটি বিতর্কিত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট আলি বোঙ্গো ওন্দিম্বা তৃতীয় মেয়াদে জয়ী হওয়ার ঘোষণা দেয় দেশটির জাতীয় নির্বাচনী সংস্থা। এর ফলে ২৯ আগস্ট নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনে এর কয়েকজন সামরিক কর্মকতা দেশের ক্ষমতা নিয়ন্ত্রণের ঘোষণা দেয়। তখন থেকে পুনরায় সামরিক শাসন জারি করা হয়। ব্যুৎপত্তি গ্যাবনের নামটি গ্যাবাও থেকে উদ্ভুত হয়েছে, পর্তুগিজ ভাষায় "ক্লোক", যা প্রায় লিব্রেভিলের কোমো নদীর মোহনার আকৃতি। ইতিহাস প্রাক-ঔপনিবেশিক যুগ (প্রাক-১৮৮৫) এই এলাকার প্রাচীনতম অধিবাসীরা ছিল পিগমি জাতি।তারা স্থানান্তরিত হওয়ার সাথে সাথে বান্টু উপজাতিরা মূলত তাদের স্থলাভিষিক্ত এবং শোষিত হয়েছিল। পঞ্চদশ শতাব্দীতে প্রথম ইউরোপীয়রা এসেছিল। অষ্টাদশ শতাব্দীর মধ্যে, গ্যাবনে ওরুঙ্গু নামে পরিচিত একটি মায়েনি-ভাষী রাজ্য গঠিত হয়েছিল। অষ্টাদশ ও ঊনবিংশ শতাব্দীতে ক্রীতদাস ব্যবসার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এটি সেই সময়ের মধ্যে গ্যাবনে গড়ে ওঠা বাণিজ্য কেন্দ্রগুলির মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী হয়ে উঠতে সক্ষম হয়েছিল। ১৭২২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি, বার্থোলোমিউ রবার্টস বা বার্টি ডুডু, ইংরেজিতে ব্ল্যাক বার্ট নামে পরিচিত একজন জলদস্যু যিনি কেপ লোপেজের কাছে সমুদ্রে মারা যান। তিনি ১৭১৯ থেকে ১৭২২ সাল পর্যন্ত আমেরিকা ও পশ্চিম আফ্রিকার জাহাজে অভিযান চালিয়েছিলেন। ঔপনিবেশিক যুগ (১৮৮৫-১৯৬০) ফরাসি অভিযাত্রী পিয়েরে স্যাভরগান ডি ব্রাজা ১৮৭৫ সালে গ্যাবন-কঙ্গো এলাকায় তার প্রথম মিশনের নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। তিনি ফ্রান্সভিল শহরটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন এবং পরে ঔপনিবেশিক গভর্নর ছিলেন। ১৮৮৫ সালে যখন ফ্রান্স আনুষ্ঠানিকভাবে এটি দখল করে তখন বেশ কয়েকটি বান্টু গোষ্ঠী বর্তমানের গ্যাবন অঞ্চলে বসবাস করতো। ১৯১০ সালে, গ্যাবন ফরাসি নিরক্ষীয় আফ্রিকার চারটি অঞ্চলের একটি ফেডারেশনে পরিণত হয়, যা ১৯৫৮ সাল পর্যন্ত টিকে ছিল। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে, মিত্ররা ভিচি ফ্রান্সের ঔপনিবেশিক প্রশাসনকে উৎখাত করার জন্য গ্যাবন আক্রমণ করেছিল। ১৯৫৮ সালের ২৮ নভেম্বর, গ্যাবন ফরাসি সম্প্রদায়ের মধ্যে একটি স্বায়ত্তশাসিত প্রজাতন্ত্রে পরিণত হয় এবং ১৯৬০ সালের ১৭ আগস্ট এটি সম্পূর্ণ স্বাধীন হয়। স্বাধীনতা-পরবর্তী (১৯৬০-বর্তমান) ১৯৬১ সালে গ্যাবনের প্রথম রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হয়েছিলেন লিওন এম'বা ও তার উপরাষ্ট্রপতি হয়েছিলেন ওমর বঙ্গো ওনডিম্বা। এম'বা' ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার পর সংবাদপত্রকে দমন করা হয়, রাজনৈতিক বিক্ষোভ নিষিদ্ধ করা হয়, মত প্রকাশের স্বাধীনতা খর্ব করা হয়, অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলিকে ধীরে ধীরে ক্ষমতা থেকে বাদ দেওয়া হয়, এবং রাষ্ট্রপতি পদে ক্ষমতা ন্যস্ত করার জন্য ফরাসি লাইন ধরে সংবিধান পরিবর্তন করে নিজের জন্য একক পদ অধিকৃত করেন। যাইহোক, ১৯৬৪ সালের জানুয়ারিতে যখন এম'বা একদলীয় শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেন, তখন একটি সেনা অভ্যুত্থান তাকে ক্ষমতা থেকে উৎখাত করতে এবং সংসদীয় গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে চেয়েছিল। ফরাসি প্যারাট্রুপাররা ২৪ ঘন্টার মধ্যে এম'বাকে ক্ষমতায় ফিরিয়ে আনতে উড়ে এসেছিল। কয়েকদিনের লড়াইয়ের পর, অভ্যুত্থান শেষ হয় এবং ব্যাপক বিক্ষোভ ও দাঙ্গা সত্ত্বেও বিরোধীদের কারারুদ্ধ করা হয়। ফরাসি সৈন্যরা আজও গ্যাবনের রাজধানী উপকণ্ঠে ক্যাম্প দে গল-এ অবস্থান করছে। ১৯৬৭ সালে এম'বা মারা গেলে বঙ্গো তার স্থলাভিষিক্ত হন। ১৯৬৮ সালের মার্চে, বঙ্গো বিডিজি ভেঙে দিয়ে এবং একটি নতুন দল - পার্টি ডেমোক্রেটিক গ্যাবোনাইজ (পিডিজি) প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে গ্যাবনকে একদলীয় রাষ্ট্র ঘোষণা করেন। তিনি পূর্ববর্তী রাজনৈতিক সংশ্লিষ্টতা নির্বিশেষে সব গ্যাবোনীয়দেরকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানান। বঙ্গো সরকারের উন্নয়ন নীতির সমর্থনে একটি একক জাতীয় আন্দোলন গড়ে তোলার চেষ্টা করেছিলেন, পিডিজিকে আঞ্চলিক ও উপজাতীয় প্রতিদ্বন্দ্বিতাকে পরিপ্লুত করার জন্য একটি হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন যা অতীতে গ্যাবোনীয় রাজনীতিকে বিভক্ত করেছিল। বঙ্গো ১৯৭৫ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন; ১৯৭৫ সালের এপ্রিলে উপরাষ্ট্রপতির পদটি বিলুপ্ত করা হয়েছিল এবং প্রধানমন্ত্রীর পদটি স্থলাভিষিক্ত করা হয়, যার স্বয়ংক্রিয় উত্তরাধিকারের অধিকার ছিল না। বঙ্গো ১৯৭৯ সালের ডিসেম্বর এবং ১৯৮৬ সালের নভেম্বরে ৭ বছরের মেয়াদে পুনরায় রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হন। ১৯৯০ সালের প্রথম দিকে অর্থনৈতিক অসন্তোষ এবং রাজনৈতিক উদারীকরণের অভিপ্রায় ছাত্র ও শ্রমিকদের সহিংস বিক্ষোভ ও ধর্মঘটে উস্কে দিয়েছিল। শ্রমিকদের অভিযোগের জবাবে, বঙ্গো তাদের সাথে সেক্টর-বাই-সেক্টর ভিত্তিতে আলোচনা করে উল্লেখযোগ্য মজুরি ছাড় দিয়েছিলেন। উপরন্তু, তিনি পিডিজি উন্মুক্ত করার এবং গ্যাবনের ভবিষ্যত রাজনৈতিক ব্যবস্থা নিয়ে আলোচনা করার জন্য ১৯৯০ সালের মার্চ-এপ্রিলে একটি জাতীয় রাজনৈতিক সম্মেলন আয়োজনের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। সম্মেলনে পিডিজি এবং ৭৪টি রাজনৈতিক সংগঠন অংশ নিয়েছিল। অংশগ্রহণকারীরা মূলত দুটি অনির্দিষ্ট জোটে বিভক্ত, ক্ষমতাসীন পিডিজি এবং এর মিত্ররা, ইউনাইটেড ফ্রন্ট বিরোধী জোট ও দল যা বিচ্ছিন্নতাকামী মোরেনা ফান্ডামেন্টাল এবং গ্যাবোনিজ প্রোগ্রেস পার্টি নিয়ে গঠিত। ১৯৯০ সালের সম্মেলনে একটি জাতীয় সিনেট গঠন, বাজেট প্রক্রিয়ার বিকেন্দ্রীকরণ, সমাবেশ ও সংবাদপত্রের স্বাধীনতা, এবং বহির্গমন ভিসার প্রয়োজনীয়তা বাতিলসহ ব্যাপক রাজনৈতিক সংস্কারের অনুমোদন দেওয়া হয়েছিল। বহুদলীয় গণতন্ত্রে রাজনৈতিক ব্যবস্থার রূপান্তরকে গাইড করার প্রচেষ্টায় বঙ্গো পিডিজি চেয়ারম্যানের পদ থেকে পদত্যাগ করেন এবং নতুন প্রধানমন্ত্রী ক্যাসিমির ওয়ে-এমবা-এর নেতৃত্বে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠন করেন। গ্যাবোনিজ সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক গ্রুপিং (আরএসডিজি) এর ফলে সরকারকে বলা হয়েছিল, এটি পূর্ববর্তী সরকারের চেয়ে ছোট ছিল এবং এর মন্ত্রিসভায় বেশ কয়েকটি বিরোধী দলের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করেছিল। আরএসডিজি ১৯৯০ সালের মে মাসে একটি অস্থায়ী সংবিধানের খসড়া তৈরি করেছিল যা মৌলিক অধিকার এবং একটি স্বাধীন বিচার ব্যবস্থা প্রদান করে তবে রাষ্ট্রপতির জন্য শক্তিশালী নির্বাহী ক্ষমতা বজায় রেখেছিল। একটি সাংবিধানিক কমিটি এবং জাতীয় পরিষদে অধিকতর পর্যালোচনার পর, এই দলিলটি ১৯৯১ সালের মার্চে কার্যকর হয়। ১৯৯০ সালের এপ্রিলের সম্মেলনের পরেও পিডিজির বিরোধিতা অব্যাহত ছিল এবং ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বরে, দুটি অভ্যুত্থান প্রচেষ্টা উন্মোচিত এবং ব্যর্থ করা হয়েছিল। বিরোধীদলীয় নেতার অকাল মৃত্যুর পর সরকার-বিরোধী বিক্ষোভ সত্ত্বেও প্রায় ৩০ বছরের মধ্যে প্রথম বহুদলীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচন ১৯৯০ সালের সেপ্টেম্বর-অক্টোবরে অনুষ্ঠিত হয়েছিল এবং পিডিজি বিপুল ভোটে সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করেছিল। ১৯৯৩ সালের ডিসেম্বরে রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো ৫১% ভোট পেয়ে পুনরায় নির্বাচিত হওয়ার পরে, বিরোধী প্রার্থীরা নির্বাচনের ফলাফলকে বৈধতা দিতে অস্বীকার করেছিল। গুরুতর নাগরিক অশান্তি এবং সহিংস দমন-পীড়নের ফলে সরকার এবং বিরোধী দলগুলির মধ্যে একটি রাজনৈতিক সমাধানের দিকে কাজ করার জন্য একটি চুক্তি হয়েছিল। এই আলোচনার ফলে ১৯৯৪ সালের নভেম্বরে প্যারিস চুক্তি হয়, যার অধীনে বেশ কয়েকজন বিরোধী ব্যক্তিত্বকে জাতীয় ঐক্যের সরকারে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছিল। এই ব্যবস্থা শীঘ্রই ভেঙ্গে যায়, তবে, এবং ১৯৯৬ ও ১৯৯৭ সালের আইনসভা ও পৌরসভা নির্বাচনগুলি নতুন করে দলীয় রাজনীতির পটভূমি প্রদান করেছিল। পিডিজি আইনসভা নির্বাচনে ব্যাপক জয় লাভ করেছিল, কিন্তু লিব্রেভিল সহ বেশ কয়েকটি বড় শহরে ১৯৯৭ সালের স্থানীয় নির্বাচনে বিরোধী মেয়ররা নির্বাচিত হয়েছিল। বিভক্ত বিরোধিতার মুখোমুখি হয়ে, রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো ১৯৯৮ সালের ডিসেম্বরে বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ ভোটের সাথে সহজে পুনঃনির্বাচনে বিজয়ী হন। যদিও বঙ্গোর প্রধান বিরোধীরা এই ফলাফলকে প্রতারণামূলক হিসাবে প্রত্যাখ্যান করেছিল, কিছু আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষক অনেক অনুভূত অনিয়ম সত্ত্বেও ফলাফলগুলিকে প্রতিনিধিত্বকারী হিসাবে চিহ্নিত করেছিলেন এবং ১৯৯৩ সালের নির্বাচনের পরে কোনও নাগরিক অশান্তি ছিল না। ২০০১-২০০২ সালে অনুষ্ঠিত ত্রুটিপূর্ণ আইনসভা নির্বাচন শান্তিপূর্ণ হলেও যা অনেক ছোট বিরোধী দল বয়কট করেছিল এবং তাদের প্রশাসনিক দুর্বলতার জন্য ব্যাপকভাবে সমালোচিত হয়েছিল এবং পিডিজি ও সহযোগী স্বতন্ত্রদের আধিপত্যে একটি জাতীয় পরিষদ তৈরি হয়েছিল। ২০০৫ সালের নভেম্বরে রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো তার ষষ্ঠ মেয়াদে নির্বাচিত হন। তিনি সহজেই পুনঃনির্বাচনে জয়লাভ করেছিলেন, তবে বিরোধীরা দাবি করেছিলেন যে ব্যালটিং প্রক্রিয়া অনিয়মের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। তার জয়ের ঘোষণার পর সহিংসতার কিছু ঘটনা ঘটেছিল তবে সামগ্রিকভাবে গ্যাবন সাধারণত শান্তিপূর্ণ ছিল। ২০০৬ সালের ডিসেম্বরে আবার জাতীয় পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। ভোটের অনিয়মের কারণে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা বেশ কয়েকটি আসন সাংবিধানিক আদালত বাতিল করেছিল, কিন্তু ২০০৭ সালের প্রথম দিকে পরবর্তী রান-অফ নির্বাচনে আবারও পিডিজি নিয়ন্ত্রিত জাতীয় পরিষদ গঠিত হয়েছিল। ২০০৯ সালের ৮ জুন, রাষ্ট্রপতি ওমর বংগো বার্সেলোনার একটি স্পেনীয় হাসপাতালে হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান এবং গ্যাবোনীয় রাজনীতিতে একটি নতুন যুগের সূচনা হয়। সংশোধিত সংবিধান অনুযায়ী, সিনেটের সভাপতি রোজ ফ্রান্সিন রোগোমবে ২০০৯ সালের ১০ জুন অন্তর্বর্তীকালীন রাষ্ট্রপতি হন। গ্যাবনের ইতিহাসে প্রথম প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক নির্বাচন যেটিতে ওমর বঙ্গোকে একজন প্রার্থী হিসাবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়নি, ২০০৯ সালের ৩০ আগস্ট, রাষ্ট্রপতি পদে ১৮ জন প্রার্থী নিয়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। নির্বাচনের আগে কিছু বিচ্ছিন্ন প্রতিবাদ দেখা গিয়েছিল, তবে কোনো উল্লেখযোগ্য বিশৃঙ্খলা ঘটেনি। ওমর বঙ্গোর ছেলে ক্ষমতাসীন দলের নেতা আলী বঙ্গো ওনডিম্বাকে সাংবিধানিক আদালতের ৩ সপ্তাহের পর্যালোচনার পর আনুষ্ঠানিকভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়; ২০০৯ সালের ১৬ অক্টোবরে তার অভিষেক হয়েছিল। অনেক বিরোধী প্রার্থীর জালিয়াতির দাবির কারণে আদালতের পর্যালোচনাটি প্ররোচিত হয়েছিল, নির্বাচনের ফলাফলের প্রাথমিক ঘোষণার সাথে সাথে দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম শহর এবং পিডিজি শাসনের বিরোধিতার দীর্ঘকালীন দুর্গ পোর্ট-জেন্টিলে অভূতপূর্ব সহিংস বিক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। পোর্ট-জেন্টিলের নাগরিকরা রাস্তায় নেমে আসে এবং ফরাসি দূতাবাস ও একটি স্থানীয় কারাগার সহ অসংখ্য দোকান ও বাসস্থান পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল। সরকারিভাবে, দাঙ্গার সময় মাত্র চারটি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে, তবে বিরোধী দল এবং স্থানীয় নেতারা আরও অনেক হয়েছেন বলে দাবি করেছিলেন। অবরুদ্ধ পুলিশকে সমর্থন করার জন্য গেন্ডারমেস এবং সামরিক বাহিনীকে পোর্ট-জেন্টিলে মোতায়েন করা হয়েছিল এবং তিন মাসেরও বেশি সময় ধরে কারফিউ কার্যকর ছিল। ২০১০ সালের জুন মাসে একটি আংশিক আইনসভা উপ-নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। দলগুলির একটি নবগঠিত জোট ইউনিয়ন ন্যাশনাল (ইউএন) প্রথমবারের মতো অংশগ্রহণ করেছিল। ইউএন মূলত পিডিজি দলত্যাগীদের নিয়ে গঠিত, যারা ওমর বঙ্গোর মৃত্যুর পরে দল ছেড়ে চলে যায়। পাঁচটি তীব্র প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ আসনের মধ্যে, পিডিজি তিনটি এবং ইউএন দুটি জিতেছিল; উভয় পক্ষই জয় দাবি করেছিল। ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে, রাষ্ট্রপতি আলী বঙ্গোর বিরুদ্ধে সৈন্যদের নেতৃত্বে একটি অভ্যুত্থানের চেষ্টা হয়েছিল; অভ্যুত্থান শেষ পর্যন্ত ব্যর্থ হয়। সরকার এবং রাজনীতি গ্যাবন হল একটি প্রজাতন্ত্র যার ১৯৬১ সালের সংবিধানের অধীনে রাষ্ট্রপতি শাসিত সরকার ব্যবস্থা রয়েছে (১৯৭৫ সালে সংশোধিত, ১৯৯১ সালে পুনর্লিখিত এবং ২০০৩ সালে সংশোধিত)। রাষ্ট্রপতি সাত বছরের মেয়াদের জন্য সর্বজনীন ভোটাধিকারের মাধ্যমে নির্বাচিত হন; ২০০৩ সালের একটি সাংবিধানিক সংশোধনী রাষ্ট্রপতির মেয়াদের সীমা অপসারণ করে এবং আজীবন রাষ্ট্রপতি পদের সুবিধা দেয়। রাষ্ট্রপতি প্রধানমন্ত্রী, মন্ত্রিসভা এবং স্বাধীন সুপ্রিম কোর্টের বিচারকদের নিয়োগ ও বরখাস্ত করতে পারেন। রাষ্ট্রপতির অন্যান্য শক্তিশালী ক্ষমতাও রয়েছে, যেমন জাতীয় পরিষদ ভেঙে দেওয়ার ক্ষমতা, জরুরি অবস্থা ঘোষণা, আইন প্রণয়নে বিলম্ব এবং গণভোট পরিচালনা করা। গ্যাবনের একটি জাতীয় পরিষদ এবং সিনেট সহ একটি দ্বিকক্ষ বিশিষ্ট আইনসভা রয়েছে। জাতীয় পরিষদে ১২০ জন ডেপুটি রয়েছেন যারা ৫ বছরের মেয়াদে জনপ্রিয়ভাবে নির্বাচিত হন। সিনেট ১০২ জন সদস্য নিয়ে গঠিত যারা পৌর পরিষদ ও আঞ্চলিক পরিষদ দ্বারা নির্বাচিত হয় এবং ৬ বছরের জন্য কাজ করে। ১৯৯০-১৯৯১ সালের সাংবিধানিক সংশোধনে সিনেট তৈরি করা হয়েছিল, যদিও ১৯৯৭ সালের স্থানীয় নির্বাচনের আগ পর্যন্ত এটি কার্যকর করা হয়নি। সিনেটের সভাপতি রাষ্ট্রপতির পরবর্তী অবস্থানে রয়েছেন। গণতান্ত্রিক সরকার ব্যবস্থা থাকা সত্ত্বেও, ফ্রিডম ইন ওয়ার্ল্ডের প্রতিবেদনে গ্যাবনকে "মুক্ত নয়" হিসাবে তালিকাভুক্ত করেছে এবং ২০১৬ সালের নির্বাচন বিতর্কিত হয়েছে। রাজনৈতিক সংস্কৃতি ১৯৯০ সালে, সরকার গ্যাবনের রাজনৈতিক ব্যবস্থায় বড় পরিবর্তন আনে। ১৯৯০ সালের মে মাসে মার্চ-এপ্রিলের জাতীয় রাজনৈতিক সম্মেলনের বহিঃপ্রকাশ হিসাবে একটি অন্তর্বর্তীকালীন সংবিধানের খসড়া তৈরি করা হয়েছিল এবং পরে একটি সাংবিধানিক কমিটি দ্বারা সংশোধন করা হয়েছিল। এর বিধানগুলির মধ্যে ছিল একটি পাশ্চাত্য-শৈলীর অধিকারের বিল, সেই অধিকারগুলির নিশ্চয়তা তত্ত্বাবধানের জন্য একটি জাতীয় গণতন্ত্র কাউন্সিল গঠন, অর্থনৈতিক ও সামাজিক বিষয়ে একটি সরকারি উপদেষ্টা বোর্ড এবং একটি স্বাধীন বিচার বিভাগ গঠিত করা হয়। জাতীয় পরিষদ, পিডিজি কেন্দ্রীয় কমিটি এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদনের পর, ১৯৯১ সালের মার্চ মাসে পরিষদের সর্বসম্মতিক্রমে সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। বিরোধী দলগুলিকে আনুষ্ঠানিকভাবে বৈধ ঘোষণা করা না হওয়া সত্ত্বেও ১৯৯০-৯১ সালে বহুদলীয় আইনসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তা সত্ত্বেও, নির্বাচনে প্রথম প্রতিনিধিত্বমূলক বহুদলীয় জাতীয় পরিষদ তৈরি হয়েছিল। ১৯৯১ সালের জানুয়ারিতে, পরিষদ সর্বসম্মত ভোটে বিরোধী দলগুলির বৈধকরণকে নিয়ন্ত্রণ করে একটি আইন পাস করেছিল। ১৯৯৩ সালে রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো পুনঃনির্বাচিত হওয়ার পর, একটি বিতর্কিত নির্বাচনে যেখানে মাত্র ৫১% ভোট পড়েছিল, সামাজিক ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ১৯৯৪ সালের প্যারিস সম্মেলন এবং চুক্তি হয়েছিল। এগুলো পরবর্তী নির্বাচনের জন্য একটি কাঠামো প্রদান করেছিল। স্থানীয় ও আইনসভা নির্বাচন ১৯৯৬-৯৭ সাল পর্যন্ত বিলম্বিত হয়েছিল। ১৯৯৭ সালে, সিনেট এবং উপরাষ্ট্রপতির পদ তৈরি করার পাশাপাশি রাষ্ট্রপতির মেয়াদ সাত বছর পর্যন্ত বাড়ানোর জন্য কয়েক বছর আগে পেশ করা সাংবিধানিক সংশোধনী গৃহীত হয়েছিল। ২০০৯ সালের অক্টোবরে, নবনির্বাচিত রাষ্ট্রপতি আলী বঙ্গো ওনডিম্বা সরকারকে সুশৃঙ্খল করার প্রচেষ্টা শুরু করেন। দুর্নীতি ও সরকারের স্ফীতি কমানোর প্রচেষ্টায় তিনি ১৭টি মন্ত্রী পর্যায়ের পদ বাতিল করেন, উপরাষ্ট্রপতির পদ বিলুপ্ত করেন এবং অসংখ্য মন্ত্রণালয়, ব্যুরো ও অধিদপ্তরের দফতর পুনর্গঠন করেন। ২০০৯ সালের নভেম্বরে, রাষ্ট্রপতি বোঙ্গো ওনডিম্বা গ্যাবনের আধুনিকীকরণের জন্য একটি নতুন দৃষ্টিভঙ্গি ঘোষণা করেন, যার নাম "গ্যাবন উত্থানশীল"। এই কর্মসূচিতে তিনটি স্তম্ভ রয়েছে: সবুজ গ্যাবন, পরিষেবা গ্যাবন এবং শিল্প গ্যাবন। গ্যাবন উত্থানশীলের লক্ষ্য হল অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনা যাতে গ্যাবন পেট্রোলিয়ামের উপর কম নির্ভরশীল হয়, দুর্নীতি দূর করা যায় এবং কর্মশক্তিকে আধুনিক করা যায়। এই কর্মসূচির অধীনে কাঁচা কাঠের রপ্তানি নিষিদ্ধ, একটি সরকার-ব্যাপী আদমশুমারি অনুষ্ঠিত, একটি দীর্ঘ মধ্যাহ্ন বিরতি দূর করতে কাজের দিন পরিবর্তন এবং একটি জাতীয় তেল কোম্পানি তৈরি করা হয়েছিল। অস্থায়ী ফলাফলে, ক্ষমতাসীন গ্যাবোনিজ ডেমোক্রেটিক পার্টি (পিডিজি) ১২০টি সংসদীয় আসনের মধ্যে ৮৪টিতে জয়ী হয়েছিল। ২০১১ সালের ২৫ জানুয়ারি, বিরোধী দলীয় নেতা আন্দ্রে ইম্বা ওবামে রাষ্ট্রপতি পদে অধিষ্ঠিত হওয়ার দাবি করে বলেছিলেন, যে দেশটি এমন একজনের দ্বারা পরিচালিত হওয়া উচিত যা জনগণ সত্যিই চেয়েছিল। তিনি তার সরকারের জন্য ১৯ জন মন্ত্রীকে বেছেও নিয়েছিলেন এবং পুরো দলটি আরও কয়েকশ জনের সাথে জাতিসংঘের সদর দফতরে রাত কাটিয়েছিল। ২৬শে জানুয়ারি, সরকার এমবা ওবামের দল ভেঙে দেয়। এউ চেয়ারম্যান জিন পিং বলেছেন যে, এমবা ওবামের পদক্ষেপ "বিধিসম্মত প্রতিষ্ঠানের অখণ্ডতাকে আঘাত করে এবং গ্যাবনের শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাকেও বিপন্ন করে।" স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিন-ফ্রাঁসোয়া এনডংউ এমবা ওবামে এবং তার সমর্থকদের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ এনেছিলেন। জাতিসংঘের মহাসচিব বান কি মুন বলেছিলেন যে তিনি ওনডিম্বাকে একমাত্র সরকারি গ্যাবোনীয় রাষ্ট্রপতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছেন।] ২০১৬ সালের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন খুব ঘনিষ্ঠ সরকারি ফলাফল নিয়ে বিতর্কিত ছিল। রাজধানীতে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে এবং একটি নৃশংস দমন-পীড়নের মুখোমুখি হয় যা রাষ্ট্রপতির প্রহরী দ্বারা বিরোধী দলের সদর দফতরে কথিত বোমা হামলার মাধ্যমে চূড়ান্ত পর্যায়ে পৌঁছেছিল। নিরাপত্তা বাহিনীর গুলিতে ৫০ থেকে ১০০ জন নাগরিক নিহত এবং ১,০০০ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছিল। আন্তর্জাতিক পর্যবেক্ষকরা কিছু জেলায় অস্বাভাবিকভাবে উচ্চ ভোটদানের খবর সহ অনিয়মের সমালোচনা করেছেন। দেশের সর্বোচ্চ আদালত কিছু সন্দেহভাজন এলাকাকে নিষ্কাশিত করেছিল কিন্তু ব্যালট নষ্ট হয়ে যাওয়ায় পূর্ণ গণনা সম্ভব হয়নি। ক্ষমতাসীন ওনডিম্বার পক্ষে নির্বাচন ঘোষণা করা হয়েছিল। ইউরোপীয় সংসদ নির্বাচনের অস্পষ্ট ফলাফলের নিন্দা জানিয়ে এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের বিষয়ে একটি স্বাধীন তদন্তের আহ্বান জানিয়ে ২টি প্রস্তাব জারি করেছিল। বৈদেশিক সম্পর্ক স্বাধীনতার পর থেকে, গ্যাবন একটি অ-সংহত নীতি অনুসরণ করেছে, আন্তর্জাতিক বিষয়ে সংলাপের পক্ষে এবং বিভক্ত দেশগুলির প্রতিটি পক্ষকে স্বীকৃতি দিয়েছে। আন্তঃ-আফ্রিকান বিষয়গুলিতে, গ্যাবন বিপ্লবের পরিবর্তে বিবর্তনের মাধ্যমে উন্নয়নকে সমর্থন করে এবং দ্রুত অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি উন্নীতের জন্য সবচেয়ে বেশি সম্ভাবনাময় ব্যবস্থা হিসাবে নিয়ন্ত্রিত ব্যক্তিগত উদ্যোগকে সমর্থন করে। গ্যাবন চাদ, মধ্য আফ্রিকান প্রজাতন্ত্র, অ্যাঙ্গোলা, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র, গণতান্ত্রিক প্রজাতন্ত্র কঙ্গো (ডিআরসি) এবং বুরুন্ডিতে মধ্যস্থতা প্রচেষ্টায় জড়িত থাকার মাধ্যমে মধ্য আফ্রিকার স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ নেতৃত্বের ভূমিকা পালন করেছিল। ১৯৯৯ সালের ডিসেম্বরে, রাষ্ট্রপতি বঙ্গোর মধ্যস্থতার প্রচেষ্টার মাধ্যমে, কঙ্গো প্রজাতন্ত্র (ব্রাজাভিল) সরকার এবং সশস্ত্র বিদ্রোহের বেশিরভাগ নেতাদের মধ্যে একটি শান্তি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি বঙ্গো অব্যাহত ডি.আর.সি শান্তি প্রক্রিয়ার সাথেও জড়িত ছিলেন এবং আইভরি কোস্টের সংকটের মধ্যস্থতায় ভূমিকা রেখেছিলেন। গ্যাবোনীয় সশস্ত্র বাহিনী কেন্দ্রীয় আফ্রিকান প্রজাতন্ত্রে সেন্ট্রাল আফ্রিকান ইকোনমিক অ্যান্ড মানিটারি কমিউনিটি (সিইএমসি) মিশনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ ছিল। গ্যাবন জাতিসংঘ (ইউএন) এবং এর কিছু বিশেষায়িত এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থার পাশাপাশি বিশ্বব্যাংক; আইএমএফ; আফ্রিকান ইউনিয়ন (এইউ); সেন্ট্রাল আফ্রিকান কাস্টমস ইউনিয়ন/সেন্ট্রাল আফ্রিকান ইকোনমিক অ্যান্ড মনিটারি কমিউনিটি (ইউডিএসি/সিইএমসি); লোমে কনভেনশনের অধীনে ইইউ/এসিপি অ্যাসোসিয়েশন; কমিনাউতে ফিনান্সিয়েরে আফিকাইনে (সিএফএ); ইসলামী সম্মেলন সংস্থা (ওআইসি); জোট নিরপেক্ষ আন্দোলন; এবং সেন্ট্রাল আফ্রিকান স্টেটসের অর্থনৈতিক সম্প্রদায় (ইসিসিএএস/সিইইএসি)-এর সদস্য। ১৯৯৫ সালে, গ্যাবন পেট্রোলিয়াম রপ্তানিকারক দেশগুলির সংস্থা (ওপেক) থেকে নিজেকে প্রত্যাহার করেছিল, আবার ২০১৬ সালে পুনরায় যোগদান করে। গ্যাবন ২০১০ সালের জানুয়ারি থেকে ২০১১ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের একটি অস্থায়ী আসনে নির্বাচিত হয়েছিল এবং ২০১০ সালের মার্চে আবর্তিত রাষ্ট্রপতির দায়িত্ব পালন করেছিল। সামরিক গ্যাবনে প্রায় ৫,০০০ জন সদস্যের একটি ছোট, পেশাদার সামরিক বাহিনী রয়েছে, যা সেনাবাহিনী, নৌবাহিনী, বিমান বাহিনী, জেন্ডারমেরি এবং পুলিশ বাহিনীতে বিভক্ত। ১,৮০০ সদস্যের একটি রক্ষীবাহিনী রাষ্ট্রপতিকে নিরাপত্তা প্রদান করে। প্রশাসনিক বিভাগ গ্যাবন নয়টি প্রদেশে বিভক্ত, যা আরও ৫০টি বিভাগে বিভক্ত। রাষ্ট্রপতি প্রাদেশিক গভর্নর, বৈনয়িক এবং উপবৈনয়িকদের নিয়োগ করেন। প্রদেশগুলি হল (বন্ধনীতে রাজধানী): এস্টুয়ায়ার (লিব্রেভিল) হাউট-ওগুই (ফ্রান্সভিল) মোয়েন-ওগুই (ল্যাম্বারেনে) এনগোউনিয়ে (মৌইলা) নায়াঙ্গা (চিবাঙ্গা) ওগুই-ইভিন্দো (মাকোকু) ওগুই-লোলো (কৌলামৌতু) ওগুই-মেরিটাইম (পোর্ট-জেন্টিল) ওলেউ-নটেম (ওয়েম) ভূগোল গ্যাবন মধ্য আফ্রিকার আটলান্টিক উপকূলে বিষুবরেখায় ৩°উত্তর এবং ৪°দক্ষিণ অক্ষাংশ এবং ৮° এবং ১৫°পূর্ব দ্রাঘিমাংশের মধ্যে অবস্থিত। গ্যাবনের ঘনবর্ষণ বনাঞ্চল নিয়ে সাধারণত একটি নিরক্ষীয় জলবায়ু রয়েছে, যার ৮৯.৩% ভূমি বনে পরিণত। তিনটি স্বতন্ত্র অঞ্চল রয়েছে: উপকূলীয় সমভূমি ( এর মধ্যে সমুদ্রের তীর থেকে), পর্বত (লিব্রেভিলের উত্তর-পূর্বে ক্রিস্টাল পর্বতমালা, কেন্দ্রে চাইলু ম্যাসিফ) এবং পূর্বে সাভানা। উপকূলীয় সমভূমিগুলি বিশ্ব বন্যপ্রাণী তহবিলের আটলান্টিক নিরক্ষীয় উপকূলীয় বন ইকোরিজিয়নের একটি বৃহৎ অংশ গঠন করে এবং এতে মধ্য আফ্রিকার ম্যানগ্রোভের প্যাচ রয়েছে বিশেষ করে নিরক্ষীয় গিনির সীমান্তে মুনি নদীর মোহনায়। ভূতাত্ত্বিকভাবে, গ্যাবন প্রাথমিকভাবে প্রাচীন আর্কিয়ান এবং প্যালিওপ্রোটেরোজোইক আগ্নেয় এবং রূপান্তরিত বেসমেন্ট শিলা, কঙ্গো ক্র্যাটনের স্থিতিশীল মহাদেশীয় ভূত্বকের অন্তর্গত, যা অত্যন্ত পুরানো মহাদেশীয় ভূত্বকের একটি অবশিষ্টাংশ। কিছু গঠন দুই বিলিয়ন বছরেরও বেশি পুরানো। প্রাচীন শিলা এককগুলি সামুদ্রিক কার্বনেট, ল্যাকস্ট্রাইন ও মহাদেশীয় পাললিক শিলা এবং সেইসাথে অসংহত পলল ও মৃত্তিকা দ্বারা আবৃত রয়েছে যা কোয়াটারনারির শেষ ২.৫ মিলিয়ন বছরে গঠিত হয়েছিল। অতিমহাদেশ প্যানজিয়ার বিচ্ছিন্ন হওয়ার ফলে ফাটল অববাহিকা তৈরি হয়েছিল যা পলিতে ভরা এবং হাইড্রোকার্বন গঠন করেছে যা বর্তমানে গ্যাবোনিজ অর্থনীতির মূল পাথর। গ্যাবন ওকলো চুল্লি অঞ্চলের জন্য উল্লেখযোগ্য, পৃথিবীর একমাত্র পরিচিত প্রাকৃতিক পারমাণবিক বিদারণ চুল্লি যা দুই বিলিয়ন বছর আগে সক্রিয় ছিল। ফরাসি পারমাণবিক শক্তি শিল্পে সরবরাহ করার জন্য ১৯৭০-এর দশকে ইউরেনিয়াম খনিতে কাজের সময় স্থানটি আবিষ্কৃত হয়েছিল। গ্যাবনের বৃহত্তম নদী হল ওগুই যা দীর্ঘ। গ্যাবনের তিনটি কার্স্ট এলাকা রয়েছে যেখানে ডলোমাইট এবং চুনাপাথরের শিলাগুলির মধ্যে শত শত গুহা রয়েছে। কিছু গুহার মধ্যে রয়েছে গ্রোটে ডু লাস্টোরসভিল, গ্রোটে ডু লেবাম্বা, গ্রোটে ডু বোঙ্গোলো এবং গ্রোটে ডু কেসিপুগু। অনেক গুহা এখনো অনুসন্ধান করা হয়নি। ২০০৮ সালের গ্রীষ্মে একটি ন্যাশনাল জিওগ্রাফিক অভিযানে সেগুলোক নথিভুক্ত করার জন্য গুহাগুলি পরিদর্শন করেছিল। গ্যাবন প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণের প্রচেষ্টার জন্যও বিখ্যাত। ২০০২ সালে, রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গো ওনডিম্বা দেশের ভূখণ্ডের প্রায় ১০%-কে এর জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থার অংশ হিসাবে মনোনীত করেছিলেন (মোট ১৩টি পার্ক সহ), যা বিশ্বের প্রকৃতি পার্কল্যান্ডের বৃহত্তম অনুপাতগুলির মধ্যে অন্যতম। ন্যাশনাল এজেন্সি ফর ন্যাশনাল পার্ক গ্যাবনের জাতীয় উদ্যান ব্যবস্থা পরিচালনা করে। ২০১৮ সালে বনের প্রাকৃতিক ভূদৃশ্য অখণ্ডতা সূচকে গ্যাবনের গড় স্কোর ছিল ৯.০৭/১০, এটি ১৭২টি দেশের মধ্যে বিশ্বব্যাপী ৯ম স্থানে রয়েছে। প্রাকৃতিক সম্পদের মধ্যে রয়েছে পেট্রোলিয়াম, ম্যাগনেসিয়াম, লোহা, সোনা, ইউরেনিয়াম এবং বন। অর্থনীতি গ্যাবনের অর্থনীতিতে তেলের আধিপত্য রয়েছে। তেল রাজস্ব সরকারের বাজেটের প্রায় ৪৬%, মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৪৩% এবং রপ্তানির ৮১%। ১৯৯৭ সালে প্রতিদিন ৩৭০,০০০ ব্যারেলের উচ্চ বিন্দু থেকে তেল উৎপাদন বর্তমানে দ্রুত হ্রাস পাচ্ছে। কিছু অনুমান ইঙ্গিত দেয় যে, গ্যাবোনীয় তেল ২০২৫ সালের মধ্যে ব্যয় করা হবে। তেলের আয় কমে যাওয়া সত্ত্বেও, তেল-পরবর্তী পরিস্থিতির জন্য পরিকল্পনা বর্তমানে শুরু হচ্ছে। গ্রোন্ডিন অয়েল ফিল্ড ১৯৭১ সালে উপকূলে পানির গভীরতায় আবিষ্কৃত হয় এবং মাস্ট্রিচিয়ান যুগের বাটাঙ্গা বেলেপাথর থেকে উৎপন্ন হয়ে একটি অ্যান্টিলাইন লবণ কাঠামোগত ফাঁদ তৈরি করে যা প্রায় গভীর। উল্লেখযোগ্য তেল রাজস্বের বছর থেকে গ্যাবোনীয় সরকারি খরচ দক্ষতার সাথে ব্যয় করা হয়নি। ট্রান্স-গ্যাবন রেলওয়েতে অতিরিক্ত ব্যয়, ১৯৯৪ সালের সিএফএ ফ্রাঙ্কের অবমূল্যায়ন, এবং তেলের কম দামের সময়কালের কারণে গুরুতর ঋণ সমস্যা তৈরি হয়েছিল যেগুলোতে এখনও দেশটি জর্জরিত। গ্যাবন প্যারিস ক্লাব ও আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিল (আইএমএফ) এর ঋণ এবং রাজস্ব ব্যবস্থাপনার জন্য সামান্য খ্যাতি অর্জন করেছে। আইএমএফ মিশন অফ-বাজেট আইটেমগুলিতে (ভাল এবং খারাপ বছরগুলিতে) অতিরিক্ত ব্যয় করা, কেন্দ্রীয় ব্যাংক থেকে অতিরিক্ত ঋণ নেওয়া ও বেসরকারীকরণ এবং প্রশাসনিক সংস্কারের সময়সূচীতে স্খলনের জন্য ক্রমাগত সরকারের সমালোচনা করেছে। যাইহোক, ২০০৫ সালের সেপ্টেম্বরে গ্যাবন সফলভাবে আইএমএফ এর সাথে ১৫ মাসের স্ট্যান্ড-বাই ব্যবস্থা সম্পন্ন করেছিল। ২০০৭ সালের মে মাসে আইএমএফ-এর সাথে আরেকটি ৩ বছরের স্ট্যান্ড-বাই ব্যবস্থা অনুমোদিত হয়েছিল। রাষ্ট্রপতি ওমর বঙ্গোর মৃত্যু ও নির্বাচনকে ঘিরে আর্থিক সংকট এবং সামাজিক উন্নয়নের কারণে গ্যাবন ২০০৯ সালে স্ট্যান্ড-বাই ব্যবস্থার অধীনে এর অর্থনৈতিক লক্ষ্যগুলি পূরণ করতে পারেনি। আইএমএফের সঙ্গে আলোচনা চলমান ছিল। গ্যাবনের তেল রাজস্ব এই অঞ্চলের জন্য এটিকে অস্বাভাবিকভাবে বেশি ৮,৬০০ মার্কিন ডলারের মাথাপিছু জিডিপি দিয়েছে। তবে, একটি তির্যক আয় বন্টন এবং দুর্বল সামাজিক সূচকগুলি স্পষ্ট। জনসংখ্যার সবচেয়ে ধনী ২০% লোক আয়ের ৯০% এর বেশি উপার্জন করে যদিও গ্যাবোনীয় জনসংখ্যার প্রায় এক তৃতীয়াংশ দারিদ্র্যের মধ্যে বসবাস করে। অর্থনীতি নিষ্কাশনের উপর অত্যন্ত নির্ভরশীল, তবে প্রাথমিক উপকরণ প্রচুর রয়েছে। তেল আবিষ্কারের আগে লগিং গ্যাবোনীয় অর্থনীতির স্তম্ভ ছিল। বর্তমানে লগিং এবং ম্যাঙ্গানিজ খনন পরবর্তী-সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আয় উৎপাদকে রূপ নিয়েছে। সাম্প্রতিক অনুসন্ধানগুলি বিশ্বের বৃহত্তম অপ্রয়োগিত লৌহ আকরিক স্তরের উপস্থিতির পরামর্শ দেয়। নিষ্কাশন শিল্পে কর্মসংস্থানের সুযোগ ছাড়াই গ্রামীণ এলাকায় বসবাসকারী অনেকের জন্য শহুরে এলাকার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে পাঠানো রেমিট্যান্স বা জীবিকা নির্বাহের কার্যক্রমে আয়ের জোগান দেয়। বিদেশী এবং স্থানীয় পর্যবেক্ষকরা গ্যাবোনীয় অর্থনীতিতে বৈচিত্র্যের অভাবের জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। বিভিন্ন কারণ এখন পর্যন্ত নতুন শিল্পের বিকাশকে সীমিত করেছে: বাজার ছোট, প্রায় এক মিলিয়ন ফ্রান্স থেকে আমদানির উপর নির্ভরশীল আঞ্চলিক বাজারে পুঁজি করতে অক্ষম গ্যাবোনীয়দের মধ্যে উদ্যোক্তা উদ্দীপনা সবসময় থাকে না তেলের "ভাড়া" একটি মোটামুটি নিয়মিত প্রবাহ, এমনকি যদি এটি হ্রাস পায় কৃষি বা পর্যটন খাতে আরও বিনিয়োগ দুর্বল অবকাঠামোর কারণে জটিল হয়ে পড়েছে। ক্ষুদ্র প্রক্রিয়াজাতকরণ এবং পরিষেবা খাত যেগুলি বিদ্যমান রয়েছে সেগুলি মূলত কয়েকজন বিশিষ্ট স্থানীয় বিনিয়োগকারীর দ্বারা প্রভাবিত। বিশ্বব্যাংক এবং আইএমএফের অনুরোধে, সরকার ১৯৯০-এর দশকে এর রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানিগুলির বেসরকারীকরণ ও সরকারী খাতের কর্মসংস্থান এবং বেতন বৃদ্ধি সহ প্রশাসনিক সংস্কারের একটি কর্মসূচি শুরু করেছিল, কিন্তু অগ্রগতি ধীর ছিল। নতুন সরকার দেশের একটি অর্থনৈতিক রূপান্তরের দিকে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে কিন্তু এই লক্ষ্য অর্জনে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়েছে। জনসংখ্যা গ্যাবনের জনসংখ্যা প্রায় ২.১ মিলিয়ন। ঐতিহাসিক এবং পরিবেশগত কারণে ১৯০০ ও ১৯৪০ সালের মধ্যে গ্যাবনের জনসংখ্যা হ্রাস পেয়েছিল। গ্যাবনে আফ্রিকার যেকোনো দেশের চেয়ে জনসংখ্যার ঘনত্ব সবচেয়ে কম, এবং সাব-সাহারান আফ্রিকার মানব উন্নয়ন সূচকে চতুর্থ সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। জাতিগোষ্ঠী প্রায় সব গ্যাবোনীয় বান্টু বংশোদ্ভূত। গ্যাবনে বিভিন্ন ভাষা এবং সংস্কৃতি নিয়ে অন্তত চল্লিশটি জাতিগত গোষ্ঠী রয়েছে। যাদের মধ্যে রয়েছে ফ্যাং, মাইনে, পুনু-ইচিরা, এনজেবি - আদুমা, টেকে-মবেতে, মেম্বে, কোটা, আকেল। এছাড়াও বিভিন্ন আদিবাসী পিগমি জাতি রয়েছে: বঙ্গো এবং বাকা। পরেরটি গ্যাবনে একমাত্র অ-বান্টু ভাষায় কথা বলে। প্রায় ২,০০০ জন দ্বৈত নাগরিক সহ ১০,০০০ জনেরও বেশি স্থানীয় ফরাসিরা গ্যাবনে বসবাস করে। আফ্রিকার অন্য জায়গার তুলনায় গ্যাবনে জাতিগত সীমানা কম তীব্রভাবে টানা হয়েছে। বেশিরভাগ জাতিসত্তা গ্যাবন জুড়ে ছড়িয়ে রয়েছে, যার ফলে গোষ্ঠীগুলির মধ্যে ক্রমাগত যোগাযোগ ও মিথস্ক্রিয়া হয় এবং কোনও জাতিগত উত্তেজনা নেই। এর একটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল আন্তঃবিবাহ অত্যন্ত সাধারণ এবং প্রত্যেক গ্যাবোনীয় ব্যক্তি রক্তের মাধ্যমে বিভিন্ন উপজাতির সাথে যুক্ত রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে, আন্তঃবিবাহের প্রায়ই প্রয়োজন হয় কারণ অনেক উপজাতির মধ্যে একই গোত্রের মধ্যে বিবাহ নিষিদ্ধ ছিল কারণ এটি অজাচার হিসাবে বিবেচিত হয়। এর কারণ হল এই উপজাতিগুলি একটি নির্দিষ্ট পূর্বপুরুষের বংশধরদের নিয়ে গঠিত, এবং সেইজন্য উপজাতির সব সদস্য একে অপরের নিকটাত্মীয় হিসাবে বিবেচিত হয়। ফরাসি ভাষা এর প্রাক্তন ঔপনিবেশিক শাসকের একটি ঐক্যবদ্ধ শক্তি। গ্যাবন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি (পিডিজি) এর ঐতিহাসিক আধিপত্য বিভিন্ন জাতিসত্তা এবং স্থানীয় স্বার্থকে একটি বৃহত্তর সমগ্রের মধ্যে একত্রিত করার জন্য কাজ করেছে। জনসংখ্যা কেন্দ্র ভাষা ফরাসি দেশটির একমাত্র সরকারি ভাষা। এটি ধারণা করা হয়েছে যে, গ্যাবনের জনসংখ্যার ৮০% ফরাসি বলতে পারে, এবং লিব্রেভিলের বাসিন্দাদের ৩০% এই ভাষার স্থানীয় ভাষাভাষী। জাতীয়ভাবে, গ্যাবনের লোকেরা তাদের জাতিগত গোষ্ঠী অনুসারে তাদের বিভিন্ন মাতৃভাষায় কথা বলে। ২০১৩ সালের আদমশুমারিতে দেখা গেছে যে গ্যাবনের জনসংখ্যার মাত্র ৬৩.৭% একটি গ্যাবোনীয় ভাষায় কথা বলতে পারে, গ্রামীণ এলাকায় ৮৬.৩% এবং শহরাঞ্চলে ৬০.৫% অন্তত একটি জাতীয় ভাষায় কথা বলে। ২০১২ সালের অক্টোবরে, অর্গানাইজেশন ইন্টারন্যাশনাল দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির ১৪তম শীর্ষ সম্মেলনের ঠিক আগে, দেশটি আফ্রিকান দেশে দুর্নীতির বিষয়ে ফ্রান্সের তদন্তের প্রতিক্রিয়ায় ইংরেজিকে দ্বিতীয় সরকারি ভাষা হিসাবে যুক্ত করার ইচ্ছা প্রকাশ করেছিল, যদিও একজন সরকারি মুখপাত্র জোর দিয়েছিলেন যে, এটি কেবল ব্যবহারিক কারণে ছিল। পরে এটি স্পষ্ট করা হয়েছিল যে দেশটি বিদ্যালয়গুলোতে প্রথম বিদেশী ভাষা হিসাবে ইংরেজি চালু করতে চেয়েছিল, যখন ফরাসি ভাষাকে শিক্ষার সাধারণ মাধ্যম এবং একমাত্র সরকারি ভাষা হিসাবে রাখা হয়েছিল। ধর্ম গ্যাবনে প্রচলিত প্রধান ধর্মের মধ্যে রয়েছে খ্রিস্টান ধর্ম (রোমান ক্যাথলিক এবং প্রোটেস্ট্যান্টবাদ), বিউইটি, ইসলাম এবং আদিবাসী অ্যানিমিস্টিক ধর্ম। অনেক ব্যক্তি খ্রিস্টধর্ম এবং ঐতিহ্যগত আদিবাসী ধর্মীয় বিশ্বাস উভয়ের উপাদানের অনুশীলন করে। প্রায় ৭৩ শতাংশ বাসিন্দা খ্রিস্টধর্মের কমপক্ষে কিছু উপাদান অনুশীলন করে, যার মধ্যে সমন্বয়বাদী বিউইটি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে; ১২ শতাংশ ইসলাম ধর্ম পালন করে; ১০ শতাংশ শুধু ঐতিহ্যগত আদিবাসী ধর্মীয় বিশ্বাস অনুশীলন করে; আর ৫ শতাংশ ধর্ম পালন করে না বা নাস্তিক। ট্যাবু এবং জাদুর একটি প্রাণবন্ত বর্ণনা শোয়েটজার দ্বারা প্রদান করা হয়েছে। স্বাস্থ্য গ্যাবনের বেশিরভাগ স্বাস্থ্যসেবা সরকারি, তবে কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠান রয়েছে, যার মধ্যে সর্বাধিক পরিচিত হল ১৯১৩ সালে অ্যালবার্ট শোয়েটজার দ্বারা ল্যাম্বারেনেতে প্রতিষ্ঠিত হাসপাতাল। গ্যাবনের চিকিৎসা পরিকাঠামোকে পশ্চিম আফ্রিকার অন্যতম সেরা হিসাবে বিবেচনা করা হয়।] ১৯৮৫ সালের মধ্যে ২৮টি হাসপাতাল, ৮৭টি চিকিৎসা কেন্দ্র এবং ৩১২টি ইনফার্মারি ও ঔষধালয় ছিল।, প্রতি ১০০,০০০ জন লোকের মধ্যে প্রায় ২৯ জন চিকিৎসক ছিলেন এবং জনসংখ্যার প্রায় ৯০% স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবায় প্রবেশ করেছিল। ২০০০ সালে, জনসংখ্যার ৭০% নিরাপদ পানি এবং ২১% পর্যাপ্ত স্যানিটেশন ছিল। একটি ব্যাপক সরকারি স্বাস্থ্য কর্মসূচি কুষ্ঠ, ঘুমের অসুস্থতা, ম্যালেরিয়া, ফাইলেরিয়াসিস, অন্ত্রের কৃমি এবং যক্ষ্মার মতো রোগের চিকিৎসা করে। এক বছরের কম বয়সী শিশুদের টিকা দেওয়ার হার ছিল যক্ষ্মা রোগের জন্য ৯৭% এবং পোলিওর জন্য ৬৫%। ডিপিটি এবং হামের জন্য টিকা দেওয়ার হার ছিল যথাক্রমে ৩৭% এবং ৫৬%। গ্যাবনে লিব্রেভিলের একটি কারখানা থেকে ওষুধের অভ্যন্তরীণ সরবরাহ রয়েছে। মোট উর্বরতার হার ১৯৬০ সালে ৫.৮ থেকে ২০০০ সালে সন্তানপ্রসবের সময় মা প্রতি ৪.২ জন শিশুতে হ্রাস পেয়েছে। জন্মের ১০ শতাংশই ছিল কম ওজনের। ১৯৯৮ সালের হিসাবে প্রতি ১০০,০০০ জীবিত জন্মে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৫২০। ২০০৫ সালে, শিশু মৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০ জন জীবিত জন্মে ৫৫.৩৫ এবং আয়ু ছিল ৫৫.০২ বছর। ২০০২ সালের হিসাবে, সামগ্রিক মৃত্যুর হার প্রতি ১,০০০ জন বাসিন্দার মধ্যে ১৭.৬ জন ছিল বলে ধারণা করা হয়েছিল। ধারণা করা হয় এইচআইভি/এইডসের প্রাদুর্ভাব প্রাপ্তবয়স্ক জনসংখ্যার ৫.২% (১৫-৪৯ বছর বয়সী)। , প্রায় ৪৬,০০০ মানুষ এইচআইভি/এইডস নিয়ে বসবাস করছিল। ২০০৯ সালে এইডসে প্রায় ২,৪০০ জনের মৃত্যু হয়েছিল - যা ২০০৩ সালে ৩,০০০ মৃত্যুর চেয়ে কম ছিল। শিক্ষা গ্যাবনের শিক্ষা ব্যবস্থা দুটি মন্ত্রণালয় দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়: শিক্ষা মন্ত্রণালয়, সর্বশেষ বিদ্যালয় শ্রেণির মাধ্যমে প্রাক-কিন্ডারগার্টেনের দায়িত্ব এবং উচ্চ শিক্ষা ও উদ্ভাবনী প্রযুক্তি মন্ত্রণালয়, বিশ্ববিদ্যালয়, উচ্চ শিক্ষা এবং পেশাদার বিদ্যালয়ের দায়িত্ব। শিক্ষা আইনের অধীনে ৬ থেকে ১৬ বছর বয়সী শিশুদের জন্য শিক্ষা বাধ্যতামূলক। গ্যাবনের বেশিরভাগ শিশু নার্সারি বা "ক্রেচে" অংশ নিয়ে তাদের বিদ্যালয় জীবন শুরু করে, তারপর কিন্ডারগার্টেন যা "জার্ডিন ডি'এনফ্যান্টস" নামে পরিচিত। ছয় বছর বয়সে, তারা প্রাথমিক বিদ্যালয় "ইকোলে প্রাইমারি"-তে ভর্তি হয় যা ছয়টি শ্রেণি নিয়ে গঠিত। পরবর্তী স্তরটি হল "ইকোলে সেকেন্ডারি", যা সাতটি শ্রেণি নিয়ে গঠিত। পরিকল্পিত স্নাতক বয়স ১৯ বছর। যারা স্নাতক শেষ করে তারা প্রকৌশল বিদ্যালয় বা ব্যবসায় বিদ্যালয় সহ উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তির জন্য আবেদন করতে পারে। ২০১২ সালের হিসাবে গ্যাবনে, ১৫ বছর বা তার বেশি বয়সী জনসংখ্যার সাক্ষরতার হার ছিল ৮২%। সরকার বিদ্যালয় নির্মাণ, শিক্ষকদের বেতন প্রদান এবং গ্রামীণ এলাকায় সহ শিক্ষার প্রচারের জন্য তেলের রাজস্ব ব্যবহার করেছে। তবে বিদ্যালয়ের কাঠামোর রক্ষণাবেক্ষণের পাশাপাশি শিক্ষকদের বেতনও কমেছে। ২০০২ সালে স্থূল প্রাথমিক তালিকাভুক্তির হার ছিল ১৩২ শতাংশ এবং ২০০০ সালে নিট প্রাথমিক তালিকাভুক্তির হার ছিল ৭৮ শতাংশ। স্থূল এবং নেট তালিকাভুক্তির অনুপাত প্রাথমিক বিদ্যালয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে নিবন্ধিত শিক্ষার্থীদের সংখ্যার উপর ভিত্তি করে এবং তাই প্রকৃত বিদ্যালয়ে উপস্থিতি প্রতিফলিত করে না। ২০০১ সালের হিসাবে, প্রাথমিক বিদ্যালয় শুরু করা ৬৯ শতাংশ শিশু পঞ্চম শ্রেণিতে পৌঁছানোর সম্ভাবনা ছিল। শিক্ষাব্যবস্থার সমস্যাগুলির মধ্যে রয়েছে দুর্বল ব্যবস্থাপনা ও পরিকল্পনা, তদারকির অভাব, দুর্বল যোগ্যতাসম্পন্ন শিক্ষক এবং জনাকীর্ণ শ্রেণীকক্ষ। সংস্কৃতি একবিংশ শতাব্দীতে সাক্ষরতার বিস্তার না হওয়া পর্যন্ত প্রাথমিকভাবে মৌখিক ঐতিহ্যের সাথে একটি দেশ গ্যাবন লোককাহিনী এবং পৌরাণিক কাহিনীতে সমৃদ্ধ। "রাকোনটিয়ারা" বর্তমানে ঐতিহ্যগুলিকে বাঁচিয়ে রাখার জন্য কাজ করছে যেমন ফ্যাংদের মধ্যে মভেট এবং এনজেবিদের মধ্যে ইংওয়ালা। গ্যাবনে আন্তর্জাতিকভাবে সুপ্রসিদ্ধ মুখোশও রয়েছে, যেমন এন'গোলটাং (ফ্যাং) এবং কোটা -এর স্মৃতিচিহ্নের আধারের পরিসংখ্যান। প্রতিটি গ্রুপের নিজস্ব মাস্ক রয়েছে যা বিভিন্ন কারণে ব্যবহৃত হয়।এগুলি বেশিরভাগ ঐতিহ্যবাহী অনুষ্ঠান যেমন বিবাহ, জন্ম এবং অন্ত্যেষ্টিক্রিয়াতে ব্যবহৃত হয়।ঐতিহ্যবাদীরা প্রধানত বিরল স্থানীয় কাঠ এবং অন্যান্য মূল্যবান উপকরণ নিয়ে কাজ করে। সঙ্গীত গণতান্ত্রিক কঙ্গো প্রজাতন্ত্র এবং ক্যামেরুনের মতো আঞ্চলিক অতিকায়দের তুলনায় গ্যাবোনীয় সঙ্গীত কম পরিচিত। দেশটিতে গর্ব করার মতো লোক শৈলীর বিন্যাস রয়েছে, সেইসাথে গ্যাবোনীয় গায়িকা ও বিখ্যাত সরাসরি পারফর্মার পেশেন্স দাবানি এবং অ্যানি-ফ্লোর ব্যাচিলিলিসের মতো পপ তারকারাও রয়েছেন। এছাড়াও পরিচিত গিটারবাদকদের মধ্যে রয়েছেন জর্জেস ওয়েন্ডজে, লা রোজ এমবাডু ও সিলভাইন আভারা এবং গায়ক অলিভার এন'গোমা। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং যুক্তরাজ্য থেকে আমদানি করা রক এবং হিপ হপ গ্যাবনে জনপ্রিয়, যেমন রুম্বা, মাকোসা এবং সুকাস। গ্যাবোনোয় লোক যন্ত্রের মধ্যে রয়েছে ওবালা, এনগোম্বি, বালাফোন এবং ঐতিহ্যবাহী ড্রাম। গণমাধ্যম রেডিও-ডিফিউশন টেলিভিশন গ্যাবোনাইস (আরটিজি), যা সরকারের মালিকানাধীন এবং পরিচালিত, ফরাসি এবং আদিবাসী ভাষায় সম্প্রচারিত হয়। প্রধান শহরগুলিতে রঙিন টেলিভিশন সম্প্রচার চালু করা হয়েছে। ১৯৮১ সালে একটি বাণিজ্যিক রেডিও স্টেশন আফ্রিকা নাম্বার ১-এর কার্যক্রম শুরু হয়েছিল। এটি মহাদেশের সবচেয়ে শক্তিশালী রেডিও স্টেশন, এতে ফরাসি ও গ্যাবোনীয় সরকার এবং বেসরকারী ইউরোপীয় গণমাধ্যমের অংশগ্রহণ রয়েছে। ২০০৪ সালে, সরকার দুটি রেডিও স্টেশন পরিচালনা করেছিল এবং অন্য সাতটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন ছিল। এছাড়াও দুটি সরকারি এবং চারটি বেসরকারি মালিকানাধীন টেলিভিশন স্টেশন ছিল। ২০০৩ সালে, প্রতি ১,০০০ জনের জন্য প্রায় ৪৮৮টি রেডিও এবং ৩০৮টি টেলিভিশন সেট ছিল। প্রতি ১,০০০ জনের মধ্যে প্রায় ১১.৫ জন ক্যাবল গ্রাহক ছিলেন। এছাড়াও ২০০৩ সালে, প্রতি ১,০০০ জনের মধ্যে ২২.৪ জনের ব্যক্তিগত কম্পিউটার ছিল এবং প্রতি ১,০০০ জনের মধ্যে ২৬ জনের ইন্টারনেটে প্রবেশ ছিল।জাতীয় মুদ্রণ পরিষেবা হল গ্যাবোনিজ প্রেস এজেন্সি যা একটি দৈনিক পত্রিকা গ্যাবন-মাতিন প্রকাশ করে (২০০২ সালের হিসাবে সংখ্যা)। ২০০২ সালে সরকার নিয়ন্ত্রিত দৈনিক সংবাদপত্র লিব্রভিলের এল'ইউনিয়ন-এর দৈনিক প্রচার সংখ্যা ছিল ৪০,০০০। সাপ্তাহিক গ্যাবন ডি'অজুর্ধুই যোগাযোগ মন্ত্রণালয় দ্বারা প্রকাশিত হয়। প্রায় নয়টি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সাময়িকী রয়েছে যা হয় স্বাধীন বা রাজনৈতিক দলগুলির সাথে যুক্ত। এগুলি অল্প সংখ্যায় প্রকাশিত হয় এবং প্রায়ই আর্থিক সীমাবদ্ধতার কারণে বিলম্বিত হয়। গ্যাবনের সংবিধান বাকস্বাধীনতা ও স্বাধীন প্রেস প্রদান করেছে এবং সরকার এই অধিকারগুলিকে সমর্থন করে। বেশ কিছু সাময়িকী সক্রিয়ভাবে সরকারের সমালোচনা করে এবং বিদেশী প্রকাশনা ব্যাপকভাবে পাওয়া যায়। রন্ধনপ্রণালী গ্যাবোনীয় রন্ধনপ্রণালী ফরাসি রন্ধনপ্রণালী দ্বারা প্রভাবিত, তবে প্রধান খাবারও পাওয়া যায়। খেলাধুলা গ্যাবন জাতীয় ফুটবল দল ১৯৬২ সাল থেকে দেশের প্রতিনিধিত্ব করে আসছে।অনূর্ধ্ব-২৩ ফুটবল দল ২০১১ সালের সিএএফ অনূর্ধ্ব-২৩ চ্যাম্পিয়নশীপ জিতেছিল এবং ২০১২ সালের লন্ডন অলিম্পিকের জন্য যোগ্যতা অর্জন করেছিল। গ্যাবন নিরক্ষীয় গিনির সাথে ২০১২ সালের আফ্রিকা কাপ অব নেশনস এর যৌথ আয়োজক ছিল, এবং প্রতিযোগিতার ২০১৭ সালের টুর্নামেন্টের একমাত্র আয়োজক ছিল। বার্সেলোনার স্ট্রাইকার পিয়েরে-এমেরিক অবামেয়াং গ্যাবন জাতীয় দলের হয়ে খেলেন। গ্যাবন জাতীয় বাস্কেটবল দল, যার ডাকনাম লেস প্যান্থারেস, আফ্রোবাস্কেট ২০১৫-এ এর সর্বকালের সেরা পারফরম্যান্সে ৮ম স্থান অর্জন করেছিল। গ্যাবন ১৯৭২ সাল থেকে বেশিরভাগ গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছে। দেশের একমাত্র অলিম্পিক পদকজয়ী হলেন অ্যান্থনি ওবাম, যিনি লন্ডনে অনুষ্ঠিত ২০১২ অলিম্পিকে তায়কোয়ান্দোতে রৌপ্য পদক জিতেছিলেন। গ্যাবনে চমৎকার বিনোদনমূলক মাছ ধরার ব্যবস্থা রয়েছে এবং এটি আটলান্টিক টারপন ধরার জন্য বিশ্বের সেরা স্থানগুলির মধ্যে একটি হিসাবে বিবেচিত হয়। তথ্যসূত্র গ্রন্থপঞ্জি বহিঃসংযোগ গ্যাবন। ওয়ার্ল্ড ফ্যাক্টবুক. কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। বিবিসি সংবাদ থেকে গ্যাবন ইন্টারন্যাশনাল ফিউচার থেকে গ্যাবনের জন্য মূল উন্নয়ন পূর্বাভাস সাধারণ পরিসংখ্যান ও অর্থনৈতিক স্টাডিজ অধিদপ্তর থেকে ২০০৯ সালের প্রতিবেদন (পিডিএফ) প্রাক্তন ফরাসি উপনিবেশ ফরাসি ভাষী দেশ ও অঞ্চল আফ্রিকার রাষ্ট্র ইসলামি সহযোগিতা সংস্থার সদস্য রাষ্ট্র মধ্য আফ্রিকার রাষ্ট্র ১৯৬০-এ প্রতিষ্ঠিত রাষ্ট্র ও অঞ্চল গ্যাবন জাতিসংঘের সদস্য রাষ্ট্র আফ্রিকান ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্র আন্তর্জাতিক সংস্থা দে লা ফ্রাঙ্কোফোনির সদস্য রাষ্ট্র ওপেকের সদস্য রাষ্ট্র কমনওয়েলথ অব নেশনসের সদস্য প্রজাতন্ত্র কমনওয়েলথ প্রজাতন্ত্র সার্বভৌম রাষ্ট্র
https://en.wikipedia.org/wiki/Gabon
Gabon
Gabon ( gə-BON; French pronunciation: [ɡabɔ̃] ; Sangu: Ngabu), officially the Gabonese Republic (French: République gabonaise), is a country on the Atlantic coast of Central Africa, on the equator, bordered by Equatorial Guinea to the northwest, Cameroon to the north, the Republic of the Congo on the east and south, and the Gulf of Guinea to the west. It has an area of 270,000 square kilometres (100,000 sq mi) and a population of 2.3 million people. There are coastal plains, mountains (the Cristal Mountains and the Chaillu Massif in the centre), and a savanna in the east. Libreville is the country's capital and largest city. Gabon's original inhabitants were the pygmy peoples. Beginning in the 14th century, Bantu migrants began settling in the area as well. Since its independence from France in 1960, Gabon has had three presidents. In the 1990s, it introduced a multi-party system and a democratic constitution that aimed for a more transparent electoral process and reformed some governmental institutions. Despite this, the Gabonese Democratic Party (PDG) remained the dominant party until its removal from the 2023 Gabonese coup d'état. Gabon is a developing country, ranking 112th in the Human Development Index. It is one of the wealthiest countries in Africa in terms of per capita income; however, large parts of the population are very poor. Omar Bongo came to office in 1967 and created a dynasty, which stabilized its power through a clientist network, Françafrique. The official language of Gabon is French, and Bantu ethnic groups constitute around 95% of the country's population. Christianity is the nation's predominant religion, practised by about 80% of the population. With petroleum and foreign private investment, it has the fourth highest HDI (after Mauritius, Seychelles and South Africa) and the fifth highest GDP per capita (PPP) (after Seychelles, Mauritius, Equatorial Guinea and Botswana) of any African nation. Gabon's nominal GDP per capita is $10,149 in 2023 according to OPEC.
1362
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BE%E0%A6%AA%E0%A6%BE%E0%A6%97%E0%A7%8B%E0%A6%B8%20%E0%A6%A6%E0%A7%8D%E0%A6%AC%E0%A7%80%E0%A6%AA%E0%A6%AA%E0%A7%81%E0%A6%9E%E0%A7%8D%E0%A6%9C
গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ
গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ (ইংরেজি ভাষায়: Galápagos Islands; মূল স্পেনীয় নাম: Archipiélago de Colón) বেশ কিছু আগ্নেয় দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত একটি দ্বীপপুঞ্জ। প্রশান্ত মহাসাগরে বিষুব রেখার দুই পাশ জুড়ে ছড়িয়ে থাকা এই দ্বীপগুলো মহাদেশীয় ইকুয়েডর থেকে ৯৭২ কিলোমিটার পশ্চিমে অবস্থিত। বর্তমানে এটি ইউনেস্কো বিশ্ব ঐতিহ্যবাহী স্থান হিসেবে স্বীকৃত পেয়েছে, মূলত তার অনন্যসাধারণ জীববৈচিত্র্যের কারণে। গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ ইকুয়েডরের গালাপাগোস প্রদেশের অন্তর্গত এবং দেশটির জাতীয় পার্ক সিস্টেমের অংশ। দ্বীপপুঞ্জের মানুষদের প্রধান ভাষা স্পেনীয়। এই দ্বীপগুলোতে প্রচুর এন্ডেমিক তথা বিরল প্রজাতি আছে। এই প্রজাতিগুলো গালাপাগোস ছাড়া আর কোথাও দেখা যায় না। বিবর্তন তত্ত্বের জনক চার্লস ডারউইন তার বিগল ডাত্রার সময় এই দ্বীপে এসেছিলেন। ডারউইনের ভ্রমণই গালাপাগোসকে বিখ্যাত করেছে। কারণ এখানকার বৈচিত্র্যময় বিরল প্রজাতিগুলো নিবিঢ়ভাবে পর্যবেক্ষণের মাধ্যমেই ডারউইন প্রথমবারের মত বিবর্তনের পক্ষে প্রমাণ পেতে শুরু করেন। এখানকার অনেকগুলো প্রজাতি ডারউইনের প্রাকৃতিক নির্বাচন তত্ত্বের পক্ষে প্রমাণ হিসেবে কাজ করেছে। নৌচালনার জন্য এই দ্বীপের প্রথম নিখুঁত মানচিত্র প্রণয়ন করেছিলেন বাকানিয়ার অ্যামব্রোস কাউলি, ১৬৮৪ সালে। তিনি দ্বীপপুঞ্জের বিভিন্ন দ্বীপের নাম রেখেছিলেন তার সহযোগী জলদস্যুদের নামে। তার নৌভ্রমণে যেসব ইংরেজ অভিজাত লোকেরা সাহায্য করেছিল তাদের নামেও কয়েকটি দ্বীপের নাম রেখেছিলেন অবশ্য। বর্তমানে ইকুয়েডর সরকার প্রায় সবগুলো দ্বীপেরই আলাদা স্পেনীয় নাম দিয়েছে। দাপ্তরিক ও সরকারি কাজে স্পেনীয় নাম ব্যবহার করা হলেও অনেকে এখনও এগুলোকে পূর্বতন ইংরেজি নামে ডাকে। প্রধানত বাস্তুতান্ত্রিক গবেষকদের ইংরেজি নাম ব্যবহার করতে দেখা যায়। চার্লস ডারউইনের তার বিগল যাত্রায় যেসব দ্বীপে গিয়েছিলেন সেগুলোর ইংরেজি নাম আরও বেশি প্রচলিত। ইতিহাস দ্বিতীয় অভিযানের সময় এইচএমএস বিগ্‌ল এই দ্বীপে এসেছিল ক্যাপ্টেন ফিৎজরয়ের নেতৃত্বে। তারা দ্বীপে এসে পৌঁছেছিল ১৮৩৫ সালের ১৫ই সেপ্টেম্বর, মূল উদ্দেশ্য ছিল কিছু জরিপ পরিচালনা। ক্যাপ্টেন ফিৎজরয় ও তার তরুণ সঙ্গী জাহাজের প্রকৃতিবিদ চার্লস ডারউইন মূলত চারটি দ্বীপে বিস্তারিত বৈজ্ঞানিক গবেষণা ও ভূতাত্ত্বিক জরিপ পরিচালনা করেছিলেন। দ্বীপ চারটি হল চ্যাথাম, চার্লস, অ্যালবেমার্ল এবং জেমস আইল্যান্ড। কাজ শেষে ২০শে অক্টোবর তারা দ্বীপপুঞ্জ ছেড়ে গিয়েছিলেন তাদের বিশ্বভ্রমণ শেষ করার জন্য। এই দ্বীপে এসেই ডারউইন লক্ষ্য করেছিলেন এখানকার মকিংবার্ডগুলো একেক দ্বীপে একেক রকম। বর্তমানে এই পাখিগুলোকে ডারউইনের ফিঞ্চ বলা হয়, যদিও সে সময় ডারউইন মনে করেছিলেন এদের সাথে কোন গভীর সম্পর্ক নেই এবং দ্বীপ অনুযায়ী তাদের আলাদা নামকরণের বিষয়টিও ভ্রমণের সময় তিনি চিন্তা করেননি। সে সময় ইকুয়েডর প্রজাতন্ত্রের গালাপাগোস প্রদেশের গভর্নর ইংরেজ অভিজাত নিকলাস লসন চার্লস আইল্যান্ডে তাদের সাথে দেখা করেন। ডারউইনের সাথে দেখা হলে তিনি জানান, কচ্ছপও একেক দ্বীপে একেক রকম। দ্বীপপুঞ্জে থাকার শেষ দিনগুলোতে ডারউইন ভাবতে শুরু করেছিলেন, একেক দ্বীপে ফিঞ্চ ও কচ্ছপের এই বৈচিত্র্য প্রজাতির পরিবর্তন সম্পর্কে নতুন ধারণার জন্ম দিতে পারে। ইংল্যান্ডে ফিরে এসে ডারউইন গালাপাগোস সহ ভ্রমণের সময় বিভিন্ন স্থান থেকে সংগৃহীত নমুনাগুলো অভিজ্ঞ জীববিজ্ঞানী ও ভূতত্ত্ববিদদের দ্বারা পরীক্ষা করিয়ে দেখতে পেলেন, গালাপাগোসের ফিঞ্চগুলো বিভিন্ন প্রজাতির এবং দ্বীপ অনুযায়ী তাদের বৈশিষ্ট্য অনেক ভিন্ন। এই তথ্যগুলোই ডারউইনকে তার প্রাকৃতিক নির্বাচন এর মাধ্যমে বিবর্তন প্রমাণের পথে এগিয়ে নিয়ে যায়। এ ধারণা থেকেই তিনি তার সবচেয়ে বিখ্যাত বই অন দি অরিজিন অভ স্পিসিস রচনা করেন যা ১৮৫৯ সালে প্রকাশিত হয়। বহিসংযোগ Parque Nacional Galápagos Galápagos Islands xeric scrub (ওয়ার্ল্ড ওয়াইল্ডলাইফ ফান্ড) গালাপাগোসের ভূতত্ত্ব – সাধারণ তথ্য সব এখানে আছে গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জের প্রাথমিক উপনিবেশ স্থাপনকারীরা – একটি সাক্ষাৎকার ইকুয়েডর চার্লস ডারউইন বিবর্তন দ্বীপপুঞ্জ গালাপাগোস দ্বীপপুঞ্জ
https://en.wikipedia.org/wiki/Gal%C3%A1pagos_Islands
Gal%C3%A1pagos_Islands
null
1363
https://bn.wikipedia.org/wiki/%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%93%20%E0%A6%97%E0%A7%8D%E0%A6%AF%E0%A6%BE%E0%A6%B2%E0%A6%BF%E0%A6%B2%E0%A7%87%E0%A6%87
গ্যালিলিও গ্যালিলেই
গ্যালিলিও গ্যালিলেই (; জন্ম: ১৫ ফেব্রুয়ারি, ১৫৬৪ - মৃত্যু: ৮ জানুয়ারি, ১৬৪২) একজন ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী, জ্যোতির্বিজ্ঞানী, গণিতজ্ঞ এবং দার্শনিক যিনি বৈজ্ঞানিক বিপ্লবের সঙ্গে বেশ নিগূঢ়ভাবে সম্পৃক্ত। তার সবচেয়ে উল্লেখযোগ্য অবদানের মধ্যে রয়েছে দূরবীক্ষণ যন্ত্রের উন্নতি সাধন যা জ্যোতির্বিজ্ঞানের অগ্রগতিতে সবচেয়ে বড় ভূমিকা রেখেছে, বিভিন্ন ধরনের অনেক জ্যোতির্বৈজ্ঞানিক পর্যবেক্ষণ, নিউটনের গতির প্রথম এবং দ্বিতীয় সূত্র, এবং কোপারনিকাসের মতবাদের পক্ষে একটি অতি গুরুত্বপূর্ণ পর্যবেক্ষণ। বিজ্ঞানী স্টিফেন হকিংয়ের মতে আধুনিক যুগে প্রকৃতি বিজ্ঞানের এতো বিশাল অগ্রগতির পেছনে গ্যালিলিওর চেয়ে বেশি অবদান আর কেউ রাখতে পারেননি। তাঁকে আধুনিক জ্যোতির্বিজ্ঞানের জনক, আধুনিক পদার্থবিজ্ঞানের জনক এবং এমনকি আধুনিক বিজ্ঞানের জনক হিসেবেও আখ্যায়িত করা হয়ে থাকে। অ্যারিস্টটলীয় ধারণার অবসানে গ্যালিলিওর আবিষ্কারগুলোই সবচেয়ে বড়ো ভূমিকা রেখেছে। জীবনী গ্যালিলিও ১৫৬৪ খ্রিস্টাব্দের ১৫ ফেব্রুয়ারি তারিখে ইতালির টুস্কানিতে অবস্থিত পিসা নগরীতে জন্মগ্রহণ করেন। তার বাবা ভিনসেঞ্জো গ্যালিলি গণিতজ্ঞ এবং সংগীতশিল্পী ছিলেন। ভিনসেঞ্জো ১৫২০ খ্রিস্টাব্দে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে জন্ম নেন। তার মায়ের নাম গিউলিয়া আমানাতি (Giulia Ammannati)। গ্যালিলিও ছিলেন বাবা মায়ের সাত সন্তানের (কারো কারো মতে ৬) মধ্যে সবার বড়ো। অধিকাংশ বিশেষজ্ঞের মতে তিনি ভাইবোনদের মধ্যে সবচেয়ে মেধাবীও ছিলেন। বেশ অল্প বয়স থেকে গ্যালিলিওর শিক্ষাজীবন শুরু হয়। সাধারণ শিক্ষার পর তিনি পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন, কিন্তু আর্থিক অসচ্ছলতার দরুন সেখানেই তার পড়াশোনা বন্ধ করে দিতে হয়। তার পরেও ১৫৮৯ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যাপনার জন্য একটি পদ পান এবং সেখানে গণিত পড়ানো শুরু করেন। এর পরপরই তিনি পাদুয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে চলে যান এবং সেখানকার অনুষদে জ্যামিতি, বলবিজ্ঞান এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান বিষয়ে ১৬১০ খ্রিস্টাব্দের পূর্ব পর্যন্ত অধ্যাপনা করেন। ওই সময়ের মধ্যেই তিনি বিজ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলো নিয়ে ভাবেন এবং বহু গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক আবিষ্কার করেন। গ্যালিলিও এবং মারিনা গ্যামবা তিন সন্তানের জন্ম দেন, কিন্তু তারা বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হননি। গ্যালিলিও একজন নিবেদিত রোমান ক্যাথলিক ছিলেন বলে যে ধারণা প্রচলিত আছে তা মেনে নিলে তার বিবাহ বহির্ভূত এই যৌনাচার অনেকটাই অবাস্তব মনে হয়। তাদের দুই মেয়ে (ভার্জিনিয়া ও লিভিয়া) এবং এক ছেলে (ভিনসেঞ্জিও) জন্মেছিল। বিবাহ বহির্ভূত সন্তান উৎপাদনের জন্য তাদের দুই মেয়েকেই স্বল্প বয়সে আরসেত্রিতে অবস্থিত সান মেটিও নামক গির্জায় পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাদের দুই মেয়েকে বাকি জীবন সেখানেই অতিবাহিত করতে হয়েছিল। কনভেন্টে প্রবেশের পর ভার্জিনিয়া মারিয়া সেলেস্টি নাম ধারণ করে, তিনি-ই ছিলেন গ্যালিলিওর সন্তানদের মধ্যে সবার বড়ো। ভার্জিনিয়া সবচেয়ে আদরের সন্তানও ছিলেন এবং বাবার মেধার খানিকটা উত্তরাধিকার তিনি-ই লাভ করতে সমর্থ হয়েছিলেন। ১৬৩৪ খ্রিস্টাব্দের ২ এপ্রিল তারিখে তিনি মৃত্যুমুখে পতিত হন। তার সমাধি বাসিলিকা ডি সান্তা ক্রস ডি ফিরেঞ্জে গ্যালিলিওর সমাধির পাশেই অবস্থিত। লিভিয়া (জ. ১৬০১) সুওর আরকাঞ্জেলা নাম ধারণ করেন। বড়ো বোনের মতো তিনি কিছু করে দেখাতে পারেননি, জীবনের বেশির ভাগ সময়ই তিনি অসুস্থ ছিলেন। ছেলে ভিনসেঞ্জিও (জ. ১৬০৬) পরবর্তীতে বৈধ জাত্যাধিকারী হন এবং সেসটিলা বচ্চিনারিককে (Sestilia Bocchineri) বিবাহ করেন। ১৬১২ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও রোমে গিয়ে অ্যাকাডেমিয়া দেই লিন্সেই-তে যোগ দেন। সেখানে তিনি মূলত সৌর কলঙ্ক পযর্বেক্ষণ করতেন। ওই বছরই কোপারনিকাসের মতবাদের বিরোধী মতবাদ প্রচারিত হয় এবং গ্যালিলিও তা সমর্থন করেন। ১৬১৪ খ্রিস্টাব্দে সান্তা মারিয়া নভেলার প্রচারবেদিতে দাঁড়িয়ে ফাদার টমাসো কাচ্চিনি (Tommaso Caccini, ১৫৭৪ - ১৬৪৮) ব্যাখ্যা সহকারে পৃথিবীর গতি সম্পর্কে গ্যালিলিওর মতবাদ বর্ণনা করেন। এরপর সেই মতবাদের ভিত্তিতে তার বিচার করেন এবং ঘোষণা করেন যে, এগুলো ভয়ঙ্কর এবং ধর্মদ্রোহীতার শামিল। এধরনের অভিযোগ থেকে নিজেকে নির্দোষ প্রমাণের চেষ্টায় তিনি রোমে যান। কিন্তু ১৬১৬ খ্রিস্টাব্দে কার্ডিনাল রবার্ট বেলারমাইন ব্যক্তিগতভাবে তার মামলাটি হাতে নেন এবং তাঁকে হেনস্তা করতে শুরু করেন। ধর্মীয় আইনের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায় কোপারনিকাসের তত্ত্বকে স্বীকৃতি দেওয়া হয় এবং ধর্মীয় আইন হিসেবে কোপারনিকান জ্যোতির্বিজ্ঞান পড়তে বা পড়াতে বাধ্য করা হয়। ১৬২২ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও তার বিখ্যাত বই দ্য অ্যাসাইয়ার (Saggiatore) রচনা করেন যা ১৬২৩ খ্রিস্টাব্দে স্বীকৃতি পাওয়ার পর প্রকাশিত হয়। ১৬২৪ খ্রিস্টাব্দে পৃথিবীর প্রথম অণুবীক্ষণ যন্ত্র তৈরি করেন। ১৬৩০ খ্রিস্টাব্দে তিনি রোমে ফিরে যান তার রচিত একটি বই প্রকাশের লাইসেন্স নেওয়ার জন্য। বইটির নাম ছিল ডায়ালগ কনসার্নিং দ্য টু চিফ ওয়র্ল্ড সিস্টেম্‌স। এটি এই লাইসেন্সের আওতাতেই ১৬৩২ খ্রিস্টাব্দে ফ্লোরেন্স থেকে প্রকাশিত হয়। ওই বছরেরই অক্টোবর মাসে তাঁকে রোমের পবিত্র দপ্তরের (Holy Office) সম্মুখীন হতে হয়। কারণ ছিল "Congregation for the Doctrine of the Faith" (বিশ্বাসের উপদেশাবলির জন্য সমাবেশ)। আদালত থেকে তাঁকে একটি দণ্ডাদেশ দেওয়া হয় যার মাধ্যমে তাকে পূর্ববর্তী ধ্যান-ধারণা শপথের মাধ্যমে পরিত্যাগের জন্য বলা হয়। ওই দণ্ডাদেশের কার্যকরতা প্রমাণের জন্যই তাঁকে সিয়েনায় একঘরে জীবন কাটাতে হয়। এর কিছু পর ১৬৩৩ খ্রিস্টাব্দে ডিসেম্বরে তাঁকে তার নিজ বাড়ি আরসেত্রিতে ফিরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়। ১৬৩৪ খ্রিস্টাব্দে তার বড়ো মেয়ের মৃত্যুর পর গ্যালিলিও অনেকটাই ভেঙে পড়েন। বড়ো মেয়ে সিস্টার সেলেস্টি (১৬০০ - ১৬৩৪) তাঁকে সবসময় সঙ্গ দিত, এই অকালমৃত্যুতে তাই গ্যালিলিও হয়ে পড়েন নিঃসঙ্গ। ১৬৩৮ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও লিডেন থেকে তার সর্বশেষ বই টু নিউ সায়েন্সেস প্রকাশ করেন। আরসেত্রিতে ১৬৪২ খ্রিস্টাব্দে ৮ জানুয়ারি তারিখে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। মৃত্যুর সময় তার ছাত্র ভিনসেঞ্জো ভিভিয়ানি তার পাশে ছিলেন। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিসমূহ গ্যালিলিও বিজ্ঞানের জগতে পরিমাণগত পরিমাপের পদ্ধতির গোড়াপত্তনে অগ্রদূতের ভূমিকা পালন করেন। তার এই পরিমাপ ফলগুলো গাণিতিক সূক্ষ্মতার বিচারে উত্তীর্ণ হয়েছিল। একই সময় উইলিয়াম গিলবার্ট চুম্বকত্ব এবং বিদ্যুৎ নিয়ে বেশ কিছু পরিমাণগত অধ্যয়ন করেছিলেন। গ্যালিলিওর বাবা ভিনসেঞ্জো গ্যালিলি কিছু পরীক্ষা করেছিলেন যার মাধ্যমে পদার্থবিজ্ঞানের জগতে এ পর্যন্ত জানা মতে প্রথম অরৈখিক সম্পর্ক স্থাপন করা সম্ভব হয়েছিল। সুর সৃষ্টিকারী যন্ত্রের ওপর এই পরীক্ষা চালিয়ে তিনি প্রমাণ করেছিলেন যে, একটি টানা তারের জন্য, পিচ টানের বর্গমূলের সমানুপাতিক। অবদান দূরবীক্ষণ যন্ত্রের আবিষ্কার ১৬০৯ খ্রিস্টাব্দে গ্যালিলিও স্বাধীনভাবে এবং উন্নত ধরনের দূরবীক্ষণ যন্ত্র নির্মাণ ও এই যন্ত্রকে জ্যোতির্বিদ্যায় সার্থকভাবে প্রয়োগ করেন। এর আগে ১৬০৮ খ্রিস্টাব্দে ওলন্দাজ চশমা নির্মাতা লিপেরশাইম তার নির্মিত এক দূরবীক্ষণ যন্ত্রের কথা প্রকাশ করেন এবং সেই বছরই এই অদ্ভুত কাচ নির্মিত যন্ত্রের কথা গ্যালিলিওর নিকট পৌঁছে। এসময় তিনি তার এক রচনায় লেখেন: “প্রায় ১০ মাস পূর্বে আমার কাছে সংবাদ পৌঁছে যে জনৈক ওলন্দাজ চশমা নির্মাতা এমন এক যন্ত্র আবিষ্কার করেছেন যার দ্বারা দূরবর্তী বস্তুদের নিকটবর্তী বস্তুর মতো স্পষ্ট দেখা যায়। এ খবর পাওয়ামাত্র আমি নিজে কীভাবে এরূপ একটি যন্ত্র নির্মাণ করতে পারি তা চিন্তা করতে লাগলাম।” শীঘ্রই দূরবীক্ষণ যন্ত্রের নানা উন্নতি সাধন করে গ্যালিলিও দূরবর্তী বস্তুর অন্তত ৩০ গুণ বড়ো করে দেখার ব্যবস্থা করেন। চাঁদের কলঙ্কের কারণ আবিষ্কার দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে জ্যোতিষ্কদের প্রথম পর্যবেক্ষণের ফল ‘সাইডরিয়াস নানসিয়াস’ বা ‘নক্ষত্র থেকে সংবাদবাহক’ গ্রন্থে লিপিবব্ধ হয় (প্রকাশকাল ১৬১০ খ্রিস্টাব্দ)। চাঁদের পৃষ্ঠের খাদ, ছোটো-বড়ো অনেক দাগ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে এই গ্রন্থে আলোচিত হয়। ভূপৃষ্ঠের ন্যায় চাঁদের উপরিভাগে যে পাহাড়, পর্বত, উপত্যকা, নদী, গহ্বর, জলাশয় প্রভৃতির দ্বারা গঠিত গ্যালিলিও এইরূপ অভিমত ব্যক্ত করেন। দূরবীক্ষণ যন্ত্রে বড়ো বড়ো কাল দাগ দেখে তিনি তাদের সমুদ্র মনে করেছিলেন, পরে অবশ্য এই ধারণা ভুল প্রমাণিত হয়। ছায়াপথ, বিষমতারা, নীহারিকা খালি চোখে অদৃশ্য অসংখ্য নক্ষত্রের অস্তিত্ব দূরবীক্ষণ যন্ত্রে ধরা পড়ে। সে সময় খালি চোখে কৃত্তিকা তারামণ্ডলে মাত্র ৬টি নক্ষত্র দেখা যেত; কিন্তু গ্যালিলিও দূরবীক্ষণ যন্ত্রের দ্বারা ৩৬টি নক্ষত্র পর্যবেক্ষণ করেন। সে সময়ের রহস্যময় ছায়াপথ আকাশগঙ্গা পর্যবেক্ষণ করে দেখান যে, তা আসলে অসংখ্য নক্ষত্রের সমষ্টি। দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে তিনি কিছু বিষমতারা এবং কয়েকটি নীহারিকাও আবিষ্কার করেছিলেন। বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ আবিষ্কার দূরবীক্ষণ যন্ত্রের সাহায্যে গ্যালিলিও প্রথম পর্যায়ের আবিষ্কারগুলোর মধ্যে বৃহস্পতি গ্রহের উপগ্রহ আবিষ্কার বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তিনি পরপর কয়েক রাত বৃহস্পতি গ্রহ পর্যবেক্ষণ করে বৃহস্পতির চারটি উপগ্রহ খুঁজে পান। বৃহস্পতির উপগ্রহের আবিষ্কারের মধ্য দিয়ে প্রমাণ হয় যে, ‘গ্রহ-নক্ষত্র প্রভৃতি জ্যোতিষ্করা একমাত্র পৃথিবীকে কেন্দ্র করে ঘুরতে থাকে’, প্রাচীন জ্যোতির্বিদদের এই মতবাদ সত্য নয়। শনির বলয় ১৬১০ খ্রিস্টাব্দের শেষভাগে পাদুয়া পরিত্যাগের কিছু পূর্বে গ্যালিলিও শনির বলয় আবিষ্কার করেন। সৌর কলঙ্ক ১৬১০ খ্রিস্টাব্দের সেপ্টেম্বর বা অক্টোবর মাসে গ্যালিলিও সর্বপ্রথম সূর্যে কতগুলো কালো দাগ পর্যবেক্ষণ করেন। কিন্তু ১৬১২ খ্রিস্টাব্দের মে মাসের পূর্বে তিনি এ আবিষ্কারের কথা প্রকাশ করেননি। ইতিমধ্যে ইংল্যান্ডের বিজ্ঞানী টমাস হ্যারিয়ট, হল্যান্ডের জন ফ্যাব্রিসিয়াস ও জার্মানিতে শাইনার স্বাধীনভাবে সৌরকলঙ্ক পর্যবেক্ষণ করেন, এবং তাদের আবিষ্কারের কথা গ্যালিলিওর আগেই প্রকাশিত হয়। সেই জন্য সৌরকলঙ্ক আবিষ্কারের কৃতিত্ব হ্যারিয়ট, ফ্যাব্রিসিয়াস, শাইনার ও গ্যালিলিও প্রত্যেকেরই আংশিকভাবে প্রাপ্য। রচনাবলি সিডেরিয়াস নানসিয়াস অথবা দি স্টারি মেসেঞ্জার - ১৬১০ লেটা্র্স অন সানস্পট্‌স - ১৬১৩ লেটার টু গ্র‌্যান্ড ডাচেস ক্রিস্টিনা - ১৬১৫ দ্য অ্যাসায়ার (The Assayer) - ১৬২৩ ডায়ালগ কনসার্নিং দ্য টু চিফ ওয়র্ল্ড সিস্টেম্‌স - ১৬৩২ টু নিউ সায়েন্সেস - ১৬৩৮ ডায়াগ্রামা আরও দেখুন মেডিসি গ্যালিলীয় রূপান্তর ভিনসেঞ্জো গ্যালিলি বৈজ্ঞানিক বিপ্লব তথ্যসূত্র বহিঃসংযোগ গ্যালিলিওর চিত্রসমুহ গ্যালিলি গ্যালিলিওর বিচার প্রক্রিয়ার প্রকৃত দলিল ভ্যাটিক্যান গোপন আর্কাইভ থেকে গ্যালিলিও সম্পর্কে: ক্যাথলিক.নেট গ্যালিলিওকে নিয়ে কর্মশালা রাইস বিশ্ববিদ্যালয় (Rice University) CCD গ্যালিলিয়ান টেলিস্কোপে দেখা ছবি গ্যালিলিও আসলে কী দেখছিলেন তার সম্ভাবনা ১৫৬৪-এ জন্ম ১৬৪২-এ মৃত্যু ইতালীয় পদার্থবিজ্ঞানী ইতালীয় জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইতালীয় উদ্ভাবক গ্যালিলিও গ্যালিলেই তাত্ত্বিক পদার্থবিজ্ঞানী বিজ্ঞানের দার্শনিক প্রাকৃতিক দার্শনিক পরীক্ষণমূলক পদার্থবিজ্ঞানী ইতালীয় রোমান ক্যাথলিক পিসা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থী জ্যোতির্বিজ্ঞানী ইতালীয় বৈজ্ঞানিক যন্ত্র নির্মাতা
https://en.wikipedia.org/wiki/Galileo_Galilei
Galileo Galilei
Galileo di Vincenzo Bonaiuti de' Galilei (15 February 1564 – 8 January 1642), commonly referred to as Galileo Galilei (, US also , Italian: [ɡaliˈlɛːo ɡaliˈlɛːi]), was a Florentine astronomer, physicist and engineer, sometimes described as a polymath. He was born in the city of Pisa, then part of the Duchy of Florence. Galileo has been called the father of observational astronomy, modern-era classical physics, the scientific method, and modern science. Galileo studied speed and velocity, gravity and free fall, the principle of relativity, inertia, projectile motion and also worked in applied science and technology, describing the properties of the pendulum and "hydrostatic balances". He was one of the earliest Renaissance developers of the thermoscope and the inventor of various military compasses. With an improved telescope he built, he observed the stars of the Milky Way, the phases of Venus, the four largest satellites of Jupiter, Saturn's rings, lunar craters and sunspots. He also built an early microscope. Galileo's championing of Copernican heliocentrism was met with opposition from within the Catholic Church and from some astronomers. The matter was investigated by the Roman Inquisition in 1615, which concluded that his opinions contradicted accepted Biblical interpretations. Galileo later defended his views in Dialogue Concerning the Two Chief World Systems (1632), which appeared to attack Pope Urban VIII and thus alienated both the Pope and the Jesuits, who had both supported Galileo up until this point. He was tried by the Inquisition, found "vehemently suspect of heresy", and forced to recant. He spent the rest of his life under house arrest. During this time, he wrote Two New Sciences (1638), primarily concerning kinematics and the strength of materials.