id
int64
1
262
question
stringlengths
13
860
answer
stringlengths
3
2.12k
101
দুর্গাপুরের গড় বার্ষিক তাপমাত্রা (ডিগ্রী সেলসিয়াসে) নিম্নরূপ: জানুয়ারি: কম = ১০, উচ্চ = ২৫ ফেব্রুয়ারি: কম = ১৪, উচ্চ = ২৯ মার্চ: নিম্ন = ১৯, উচ্চ = ৩৪ এপ্রিল: কম = ২৩, উচ্চ = ৩৮ মে: কম = ২৫, উচ্চ = ৩৭ জুন: কম = ২৬, উচ্চ = ৩৫ জুলাই: নিম্ন = ২৬, উচ্চ = ৩৩ আগস্ট: নিম্ন = ২৫, উচ্চ = ৩৩ সেপ্টেম্বর: কম = ২৫, উচ্চ = ৩২ অক্টোবর: নিম্ন = ২১, উচ্চ = ৩২ নভেম্বর: কম = ১৬, উচ্চ = ২৯ ডিসেম্বর: নিম্ন = ১১, উচ্চ = ২৬ উপরের তথ্যগুলোকে টেবিল হিসেবে উপস্থাপন করুন।
নিচের টেবিলে দুর্গাপুরের গড় বার্ষিক তাপমাত্রা (ডিগ্রী সেলসিয়াসে) দেখানো হল। | মাস | নিম্ন তাপমাত্রা | উচ্চ তাপমাত্রা | | -------- | ------- | ------- | | জানুয়ারি | ১০ | ২৫ | | ফেব্রুয়ারি | ১৪ | ২৯ | | মার্চ | ১৯ | ৩৪ | | এপ্রিল | ২৩ | ৩৮ | | মে | ২৫ | ৩৭ | | জুন | ২৬ | ৩৫ | | জুলাই | ২৬ | ৩৩ | | আগস্ট | ২৫ | ৩৩ | | সেপ্টেম্বর | ২৫ | ৩২ | | অক্টোবর | ২১ |৩২ | | নভেম্বর | ১৬ |২৯ | | ডিসেম্বর | ১১ | ২৬ |
102
দুর্গাপুরে গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত (মিলিমিটারে) নিচে দেওয়া হল: জানুয়ারী: ২৫.৭ ফেব্রুয়ারি: ৪৮.৯ মার্চ: ৪৫.২ এপ্রিল: ৮০.৩ মে: ১৫১.১ জুন: ৪৭১.৯ জুলাই: ৫৯৪.৮ আগস্ট: ৪৮৩.৬ সেপ্টেম্বর: ৪৫৬.৬ অক্টোবর: ১৯৮.১ নভেম্বর: ৩০ ডিসেম্বর: ২৫.৩ উপরের তথ্যগুলোকে টেবিল হিসেবে উপস্থাপন করুন।
নিচের টেবিলে দুর্গাপুরের গড় বার্ষিক বৃষ্টিপাত (মিলিমিটারে) দেখানো হল। | মাস | বৃষ্টিপাত (মিমি) | | :-------- | -------: | | জানুয়ারি | ২৫.৭ | | ফেব্রুয়ারি | ৪৮.৯ | | মার্চ | ৪৫.২ | | এপ্রিল | ৮০.৩ | | মে | ১৫১.১ | | জুন | ৪৭১.৯ | | জুলাই | ৫৯৪.৮ | | আগস্ট | ৪৮৩.৬ | | সেপ্টেম্বর | ৪৫৬.৬ | | অক্টোবর | ১৯৮.১ | | নভেম্বর | ৩০.০ | | ডিসেম্বর | ২৫.৩ |
103
দুর্গাপুরের গড় বার্ষিক আবহাওয়ার অবস্থা নীচে দেওয়া হল: মাস উচ্চ / নিম্ন (°সে) বৃষ্টি (মিমি) জানুয়ারী ২৫°/১০° ২ দিন ফেব্রুয়ারি ২৯°/১৪° ৩ দিন মার্চ ৩৪°/১৯° ৪ দিন এপ্রিল ৩৮°/২৩° ৪ দিন মে ৩৭°/২৫° ৭ দিন জুন ৩৫°/২৬° ১৩ দিন জুলাই ৩৩°/২৬° ১৯ দিন আগস্ট ৩৩°/২৫° ১৯ দিন সেপ্টেম্বর ৩২°/২৫° ১৪ দিন অক্টোবর ৩২°/২১° ৭ দিন নভেম্বর ২৯°/১৬° ১ দিন ডিসেম্বর ২৬°/১১° ১ দিন উপরের তথ্যের উপর ভিত্তি করে, নিম্নলিখিত প্রশ্নের উত্তর দাও: ১. দুর্গাপুরে কখন সবচেয়ে বেশি বৃষ্টি হয়? ২. সবচেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয় কখন?
উপরের তথ্য অনুযায়ী: ১. দুর্গাপুরে সাধারণত জুলাই এবং অগাস্ট মাসে বেশি বৃষ্টিপাত হয়। এই সময় মাসে প্রায় ১৯ দিন বৃষ্টি হয়। ২. নভেম্বর থেকে জানুয়ারী মাসে বৃষ্টিপাত কম হয়। এই সময় মাসে প্রায় দুএকদিন বৃষ্টি হয়।
104
দুর্গাপুরের গড় বার্ষিক তাপমাত্রা নীচের টেবিলে দেখানো হয়েছে। সর্বোচ্চ এবং সর্বনিম্ন তাপমাত্রার মধ্যে পার্থক্য নির্দেশ করতে একটি কলাম যোগ করুন। এছাড়াও, গড় তাপমাত্রা দেখানোর জন্য আরেকটি কলাম যোগ করুন। | মাস | নিম্ন তাপমাত্রা | উচ্চ তাপমাত্রা | | -------- | ------- | ------- | | জানুয়ারি | ১০ | ২৫ | | ফেব্রুয়ারি | ১৪ | ২৯ | | মার্চ | ১৯ | ৩৪ | | এপ্রিল | ২৩ | ৩৮ | | মে | ২৫ | ৩৭ | | জুন | ২৬ | ৩৫ | | জুলাই | ২৬ | ৩৩ | | আগস্ট | ২৫ | ৩৩ | | সেপ্টেম্বর | ২৫ | ৩২ | | অক্টোবর | ২১ |৩২ | | নভেম্বর | ১৬ |২৯ | | ডিসেম্বর | ১১ | ২৬ |
অবশ্যই। | মাস | নিম্ন তাপমাত্রা (°সে) | উচ্চ তাপমাত্রা (°সে) | পার্থক্য (°সে) | গড় তাপমাত্রা (°সে) | | :-------- | -------: | -------: | -------: | -------: | | জানুয়ারি | ১০ | ২৫ | ১৫ | ১৭.৫ | | ফেব্রুয়ারি | ১৪ | ২৯ | ১৫ | ২১.৫ | | মার্চ | ১৯ | ৩৪ | ১৫ | ২৬.৫ | | এপ্রিল | ২৩ | ৩৮ | ১৫ | ৩০.৫ | | মে | ২৫ | ৩৭ | ১২ | ৩১.০ | | জুন | ২৬ | ৩৫ | ৯ | ৩০.৫ | | জুলাই | ২৬ | ৩৩ | ৭ | ২৯.৫ | | আগস্ট | ২৫ | ৩৩ | ৮ | ২৯.০ | | সেপ্টেম্বর | ২৫ | ৩২ | ৭ | ২৮.৫ | | অক্টোবর | ২১ |৩২ | ১১ | ২৬.৫ | | নভেম্বর | ১৬ |২৯ | ১৩ | ২২.৫ | | ডিসেম্বর | ১১ | ২৬ | ১৫ | ১৮.৫ | উপরের টেবিলের চতুর্থ কলামে তাপমাত্রার পার্থক্য দেখানো হয়েছে। শেষ অর্থাৎ পঞ্চম কলামটিতে মাসের গড় তাপমাত্রা দেখানো হয়েছে। দয়া করে মনে রাখবেন যে এই আবহাওয়ার তথ্যগুলি গড় মান উপস্থাপন করে। প্রকৃত আবহাওয়ার অবস্থা সময়ের সাথে পরিবর্তিত হতে পারে।
105
কলকাতার গড় বার্ষিক আবহাওয়া নিম্নরূপ: মাস উচ্চ / নিম্ন (°সে) বৃষ্টি (মিমি) জানুয়ারী ২৬° / ১২° ১ দিন ফেব্রুয়ারি ২৯° / ১৬° ১ দিন মার্চ ৩৪° / ২১° ২ দিন এপ্রিল ৩৬° / ২৪° ৪ দিন মে ৩৬° / ২৫° ৭ দিন জুন ৩৪° / ২৬° ১৪ দিন জুলাই ৩৩° / ২৫° ১৮ দিন আগস্ট ৩৩° / ২৬° ১৮ দিন সেপ্টেম্বর ৩৩° / ২৫° ১৪ দিন অক্টোবর ৩২° / ২৩° ৬ দিন নভেম্বর ৩০° / ১৯° ১ দিন ডিসেম্বর ২৭° / ১৩° ০ দিন উপরের তথ্যের উপর ভিত্তি করে, ফেব্রুয়ারিতে সাধারণত আবহাওয়া কেমন থাকে তা বর্ণনা করুন।
উপরের তথ্যের ভিত্তিতে, ফেব্রুয়ারি মাসে কলকাতায় সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ১৬ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অন্যদিকে, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ২৯ ডিগ্রি। এই সময় বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা খুবই কম।
106
দুর্গাপুরের গড় বার্ষিক আবহাওয়ার কিছু তথ্য (তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত): মাস উচ্চ / নিম্ন (°সে) বৃষ্টি জানুয়ারী ২৫°/১০° ২ দিন ফেব্রুয়ারি ২৯°/১৪° ৩ দিন মার্চ ৩৪°/১৯° ৪ দিন এপ্রিল ৩৮°/২৩° ৪ দিন মে ৩৭°/২৫° ৭ দিন জুন ৩৫°/২৬° ১৩ দিন জুলাই ৩৩°/২৬° ১৯ দিন আগস্ট ৩৩°/২৫° ১৯ দিন সেপ্টেম্বর ৩২°/২৫° ১৪ দিন অক্টোবর ৩২°/২১° ৭ দিন নভেম্বর ২৯°/১৬° ১ দিন ডিসেম্বর ২৬°/১১° ১ দিন এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে, প্রশ্নগুলির উত্তর দিন: (ক) মে মাসে দুর্গাপুরের আবহাওয়া কেমন? (খ) অক্টোবর মাসে তুলনামূলকভাবে খুব বৃষ্টি হয় -- ঠিক না ভুল? (ঘ) কোন সময় তাপমাত্রা সব থেকে কম?
(ক) প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, মে মাসে দুর্গাপুরে খুব গরম পড়ে। সর্বাধিক তাপমাত্রা প্রায় ৩৭ ডিগ্রির কাছাকাছি এবং বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা কম। (খ) অক্টোবর মাসে তুলনামূলকভাবে খুব বৃষ্টি হয় -- এটি ভুল। অক্টোবর মাসে দুর্গাপুরে প্রায় সাতদিন মতন বৃষ্টি হয়, অর্থাৎ তুলনামূলকভাবে কম বৃষ্টি হয়। (ঘ) জানুয়ারী মাসে দুর্গাপুরের তাপমাত্রা প্রায় ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি। এইসময় বেশ ঠান্ডা পড়ে।
107
দুর্গাপুরের গড় বার্ষিক আবহাওয়ার কিছু তথ্য (তাপমাত্রা ও বৃষ্টিপাত): মাস উচ্চ / নিম্ন (°সে) বৃষ্টি জানুয়ারী ২৫°/১০° ২ দিন ফেব্রুয়ারি ২৯°/১৪° ৩ দিন মার্চ ৩৪°/১৯° ৪ দিন এপ্রিল ৩৮°/২৩° ৪ দিন মে ৩৭°/২৫° ৭ দিন জুন ৩৫°/২৬° ১৩ দিন জুলাই ৩৩°/২৬° ১৯ দিন আগস্ট ৩৩°/২৫° ১৯ দিন সেপ্টেম্বর ৩২°/২৫° ১৪ দিন অক্টোবর ৩২°/২১° ৭ দিন নভেম্বর ২৯°/১৬° ১ দিন ডিসেম্বর ২৬°/১১° ১ দিন এই তথ্যের উপর ভিত্তি করে, প্রশ্নগুলির উত্তর দিন: (ক) মে মাসে দুর্গাপুরের আবহাওয়া কেমন? (খ) অক্টোবর মাসে তুলনামূলকভাবে খুব বৃষ্টি হয় -- ঠিক না ভুল? (ঘ) কোন সময় তাপমাত্রা সব থেকে কম?
উপরের তথ্য অনুযায়ী প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া হল: (ক) মে মাসে দুর্গাপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ২৫° সেলসিয়াস। অন্যদিকে, এই সময় সর্বোচ্চ তাপমাত্রা প্রায় ৩৭° সেলসিয়াস। এই সময় বৃষ্টিপাত সাধারণত কম হয়, প্রায় ৭ দিন। অর্থাৎ মে মাসে দুর্গাপুরে প্রচণ্ড গরম অনুভব করা যায়। (খ) "অক্টোবর মাসে তুলনামূলকভাবে খুব বৃষ্টি হয়" -- এই দাবিটি ভুল। অক্টোবর মাসে গড়ে মাসে প্রায় সাত দিন বৃষ্টি হয় অর্থাৎ তুলনামূলকভাবে কম বৃষ্টি হয়। (ঘ) ডিসেম্বর-জানুয়ারী মাসে দুর্গাপুরের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা প্রায় ১০ ডিগ্রির কাছাকাছি। বস্তুত পক্ষে, তাপমাত্রা এর ও নিচে নামতে পারে।
108
আসুন আমরা ৮ জুন ২০২৪-এ ভারতের কয়েকটি শহরের আবহাওয়ার অবস্থা বিবেচনা করি। শহরের নাম, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার পরিমাপ যথাক্রমে নীচে দেওয়া হল। শহর, উচ্চ (°সে), কম (°সে), আর্দ্রতা (%) দুর্গাপুর, ৪৩, ৩০, ২২ বেঙ্গালুরু, ২৯, ২১, ৬৬ কলকাতা, ৩৮, ২৯, ৬৩ নয়াদিল্লি, ৪২, ৩১, ২১ চেন্নাই, ৩৫, ২৯, ৬৭ মুম্বাই, ৩৩, ২৭, ৭৩ প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে ৮ই জুন উষ্ণতম শহর কোনটি?
প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ৮ জুন ২০২৪-এ দুর্গাপুরে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা সব থেকে বেশি ছিল, প্রায় ৪৩ ডিগ্রী সেলসিয়াস। এর ভিত্তিতে, ওই দিন দুর্গাপুর সবচেয়ে উষ্ণতম শহর ছিল। অবশ্য নয়াদিল্লির পরিস্থিতিও কাছাকাছি ছিল।
109
৮ জুন ২০২৪ তারিখে ভারতের কয়েকটি শহরের আবহাওয়ার অবস্থা বিবেচনা করুন। শহরের নাম, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার পরিমাপ যথাক্রমে নীচে দেওয়া হল। শহর, উচ্চ (°সে), কম (°সে), আর্দ্রতা (%) বেঙ্গালুরু, ২৯, ২১, ৬৬ দুর্গাপুর, ৪৩, ৩০, ২২ কলকাতা, ৩৮, ২৯, ৬৩ মুম্বাই, ৩৩, ২৭, ৭৩ নয়াদিল্লি, ৪২, ৩১, ২১ চেন্নাই, ৩৫, ২৯, ৬৭ প্রদত্ত তথ্যের ভিত্তিতে ৮ই জুন সবচেয়ে আদ্র শহর কোনটি ছিল?
প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ৮ জুন ২০২৪-এ মুম্বাইয়ের আদ্রতা সর্বাধিক ছিল, প্রায় ৭৩%।
110
৮ জুন ২০২৪-এ ভারতের কয়েকটি শহরের আবহাওয়ার তথ্য দেওয়া হল। শহরের নাম, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার পরিমাপ যথাক্রমে নীচে দেওয়া হল। শহর, উচ্চ (°সে), কম (°সে), আর্দ্রতা (%) কলকাতা, ৩৮, ২৯, ৬৩ চেন্নাই, ৩৫, ২৯, ৬৭ বেঙ্গালুরু, ২৯, ২১, ৬৬ দুর্গাপুর, ৪৩, ৩০, ২২ মুম্বাই, ৩৩, ২৭, ৭৩ নয়াদিল্লি, ৪২, ৩১, ২১ এর ভিত্তিতে কোন শহরের তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ছিল?
প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী, ৮ জুন ২০২৪-এ বেঙ্গালুরুর তাপমাত্রা সর্বনিম্ন ছিল, প্রায় ২১ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
111
৮ জুন ২০২৪-এ ভারতের কয়েকটি শহরের আবহাওয়ার তথ্য দেওয়া হল। শহরের নাম, সর্বোচ্চ তাপমাত্রা, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা এবং আর্দ্রতার পরিমাপ যথাক্রমে নীচে দেওয়া হল। শহর, উচ্চ (°সে), নিম্ন (°সে), আর্দ্রতা (%) নয়াদিল্লি, ৪২, ৩১, ২১ চেন্নাই, ৩৫, ২৯, ৬৭ বেঙ্গালুরু, ২৯, ২১, ৬৬ কলকাতা, ৩৮, ২৯, ৬৩ দুর্গাপুর, ৪৩, ৩০, ২২ মুম্বাই, ৩৩, ২৭, ৭৩ একটি টেবিলে এই তথ্য প্রদর্শন করুন। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার উপর ভিত্তি করে নিচের ক্রমে সারি সাজান।
অবশ্যই। প্রদত্ত তথ্যগুলি নিচের টেবিল-এ দেখানো হল। সর্বোচ্চ তাপমাত্রার ভিত্তিতে সারিগুলো বেশি থেকে কম মান অনুসারে সাজান হয়েছে। | শহর | উচ্চ (°সে) | নিম্ন (°সে) | আর্দ্রতা (%) | | :-------- | -------: | -------: | -------: | | দুর্গাপুর | ৪৩ | ৩০ | ২২ | | নয়াদিল্লি | ৪২ | ৩১ | ২১ | | কলকাতা | ৩৮ | ২৯ | ৬৩ | | চেন্নাই | ৩৫ | ২৯ | ৬৭ | | মুম্বাই | ৩৩ | ২৭ | ৭৩ | | বেঙ্গালুরু | ২৯ | ২১ | ৬৬ |
112
কয়েকটি শহরের আবহাওয়ার তথ্য নিচে দেওয়া হল। শহর, উচ্চ (°সে), নিম্ন (°সে), আর্দ্রতা (%) দুর্গাপুর, ৪৩, ৩০, ২২ নয়াদিল্লি, ৪২, ৩১, ২১ বেঙ্গালুরু, ২৯, ২১, ৬৬ কলকাতা, ৩৮, ২৯, ৬৩ চেন্নাই, ৩৫, ২৯, ৬৭ মুম্বাই, ৩৩, ২৭, ৭৩ একটি টেবিলে এই তথ্য প্রদর্শন করুন। শহরগুলি কোথায় অবস্থিত -- পূর্ব, পশ্চিম, উত্তর বা দক্ষিণ -- তা দেখানোর জন্য শেষে একটি কলাম যোগ করুন।
অবশ্যই। প্রদত্ত তথ্য নিচের টেবিল-এ দেখানো হল। টেবিলের শেষে অঞ্চল কলামটি যোগ করা হয়েছে। | শহর | উচ্চ (°সে) | নিম্ন (°সে) | আর্দ্রতা (%) | অঞ্চল | | :-------- | -------: | -------: | -------: | :-------- | | দুর্গাপুর | ৪৩ | ৩০ | ২২ | পূর্ব | | নয়াদিল্লি | ৪২ | ৩১ | ২১ | উত্তর | | বেঙ্গালুরু | ২৯ | ২১ | ৬৬ | দক্ষিণ | | কলকাতা | ৩৮ | ২৯ | ৬৩ | পূর্ব | | চেন্নাই | ৩৫ | ২৯ | ৬৭ | দক্ষিণ | | মুম্বাই | ৩৩ | ২৭ | ৭৩ | পশ্চিম |
113
২০২৪ সালের ৮ই জুনের আবহাওয়ার তথ্য দেওয়া হল। শহর, উচ্চ (°সে), নিম্ন (°সে), আর্দ্রতা (%) দুর্গাপুর, ৪৩, ৩০, ২২ নয়াদিল্লি, ৪২, ৩১, ২১ বেঙ্গালুরু, ২৯, ২১, ৬৬ কলকাতা, ৩৮, ২৯, ৬৩ চেন্নাই, ৩৫, ২৯, ৬৭ মুম্বাই, ৩৩, ২৭, ৭৩ তথ্যের ভিত্তিতে দুর্গাপুরের আবহাওয়ার বর্ণনা দিন।
অবশ্যই। প্রদত্ত তথ্য অনুযায়ী ৮ জুন ২০২৪-এ দুর্গাপুরের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল, যথাক্রমে, ৪৩° সেলসিয়াস ও ৩০° সেলসিয়াস। ওইদিন দুর্গাপুরের আদ্রতা ছিল প্রায় ২২ শতাংশ।
114
২০২৪ সালের ৮ই জুনের আবহাওয়ার তথ্য দেওয়া হল। শহর, উচ্চ (°সে), নিম্ন (°সে), আর্দ্রতা (%) দুর্গাপুর, ৪৩, ৩০, ২২ নয়াদিল্লি, ৪২, ৩১, ২১ বেঙ্গালুরু, ২৯, ২১, ৬৬ কলকাতা, ৩৮, ২৯, ৬৩ চেন্নাই, ৩৫, ২৯, ৬৭ মুম্বাই, ৩৩, ২৭, ৭৩ তথ্যের ভিত্তিতে, দুর্গাপুর এবং কলকাতার মধ্যে তাপমাত্রার পার্থক্য কত ছিল?
প্রদত্ত তথ্যানুযায়ী, ৮ই জুন দুর্গাপুরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৪৩°সে। অন্যদিকে, কলকাতার সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৮°সে। অতএব সেইদিন দুই শহরের মধ্যে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল ৪৩ - ৩৮ = ৫°সে। অপরদিকে, ওইদিন দুর্গাপুর ও কলকাতার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল, যথাক্রমে, ৩০°সে ও ২৯°সে। অর্থাৎ, সর্বনিম্ন তাপমাত্রার পার্থক্য ছিল ৩০ - ২৯ = ১°সে।
115
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পেটে ও পিঠে হাস্যকৌতুকের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর পরবর্তী সংলাপ দুটি লেখ। তিনকড়ি। কী হে বটকৃষ্ণবাবু, কী করছ? বনমালীর নিরুত্তরে অবাক হইয়া থাকেন তিনকড়ি। উত্তর দিচ্ছ না যে? তোমার নাম বটকৃষ্ণ নয়? বনমালী। (সংক্ষেপে) না। তিনকড়ি। অবিশ্যি বটকৃষ্ণ। যদি হয়! আচ্ছা, তোমার নাম কী বলো। বনমালী। আমার নাম বনমালী।
তিনকড়ি। (হাসিয়া উঠিয়া) ছেলেমানুষ, কিচ্ছু জান না। বনমালীও যা বটকৃষ্ণও তাই, একই। বনমালীর মানে জান? বনমালী। না।
116
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পেটে ও পিঠে হাস্যকৌতুকের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর পরবর্তী সংলাপ তিনটি লেখ। তিনকড়ি। অবিশ্যি বটকৃষ্ণ। যদি হয়! আচ্ছা, তোমার নাম কী বলো। বনমালী। আমার নাম বনমালী। তিনকড়ি। (হাসিয়া উঠিয়া) ছেলেমানুষ, কিচ্ছু জান না। বনমালীও যা বটকৃষ্ণও তাই, একই। বনমালীর মানে জান? বনমালী। না।
তিনকড়ি। বটকৃষ্ণের মানে বনমালী। --আচ্ছা, বাবা তোমাকে কখনো আদর করেও ডাকে না বটকৃষ্ণ? বনমালী। না। তিনকড়ি। ছি ছি! আমার বাবা আমাকে বলে বটকৃষ্ণ, মোধোর বাবা মোধোকে বলে বটকৃষ্ণ - তোমার বাবা তোমাকে কিচ্ছু বলে না! ছি ছি!
117
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পেটে ও পিঠে হাস্যকৌতুকের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর পরবর্তী সংলাপ তিনটি লেখ। বনমালী। (সগর্বে) বাবা আমাকে বলে ভুতু। তিনকড়ি। আচ্ছা ভুতুবাবু, তোমার ডান হাত কোন্‌টা বলো দেখি। বনমালী। (ডান হাত তুলিয়া) এইটে ডান হাত। তিনকড়ি। আচ্ছা তোমার বাঁ হাত কোন্‌টা বলো দেখি। বনমালী। (বাম হাত তুলিয়া) এইটে। তিনকড়ি। (খপ্‌ করিয়া পাত হইতে একটা সন্দেশ তুলিয়া নিজের মুখের কাছে ধরিয়া) আচ্ছা ভুতুবাবু, এইটে কী বলো দেখি।
তিনকড়ি। (সরোষে পৃষ্ঠে চপেটাঘাত করিয়া) এতবড়ো ধেড়ে ছেলে হলি, এইটে কী জানিস নে! এটা সন্দেশ। এটা খেতে হয়। তিনকড়ির মুখের মধ্যে সন্দেশের দ্রুত অন্তর্ধান বনমালী। ( পৃষ্ঠে হাত দিয়া ) ভ্যাঁ-- তিনকড়ি। ছি ছি ভুতুবাবু, তোমার জ্ঞান কবে হবে বলো দেখি। এইটে জান না যে, পেটে খেলে পিঠে সয়?
118
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পেটে ও পিঠে হাস্যকৌতুকের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর পরবর্তী সংলাপ ছয়টি লেখ। তিনকড়ি। (বনমালীর পৃষ্ঠে হাত বুলাইয়া অতি কোমল স্বরে) বাবা জিগ্‌গেস করছেন, কথার উত্তর দাও। বনমালী। (সরোদনে) আমাকে মেরেছে|। তিনকড়ি। আজ্ঞে, পাড়ার একটা ডানপিটে ছেলে খামকা মেরে গেল, বেচারার কোনো দোষ নেই-- সন্দেশগুলি খেয়ে ভুতুবাবু ঠোঙাটি নিয়ে খেলা করছিল-- পিতা। (সরোষে) ভুতু, কে মেরেছে রে? বনমালী। (তিনকড়িকে দেখাইয়া ) ও মেরেছে।
তিনকড়ি। আজ্ঞে হাঁ, আমি তাকে খুব মেরেছি বটে। কার না রাগ হয় বলুন দেখি। ছেলেমানুষ খেলা করছে-- খামকা ওকে মেরে ওর ঠোঙাটা কেড়ে নেও কেন বাপু? আপনি থাকলে আপনিও তাকে মারতেন। পিতা। আমি থাকলে তার দুখানা হাড় একত্তর রাখতেম না। যত-সব ডানপিটে ছেলে এ পাড়ায় জুটেছে। বনমালী। বাবা, ও আমার সন্দেশ-- তিনকড়ি। (নিবৃত্ত করিয়া) আরে, আরে, ও কথা আর বলতে হবে না।
119
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পেটে ও পিঠে হাস্যকৌতুকের দ্বিতীয় দৃশ্য থেকে একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর পরের দুটি সংলাপ লেখ। দ্বিতীয় দৃশ্য অন্তঃপুরে তিনকড়ি পিষ্টক-আহারে প্রবৃত্ত তিনকড়ি। (স্বগত ) ডান হাতের ব্যাপারটা আজ বেশ চলছে ভালো। ভুতুর মা। (পাতে চারটে পিঠে দিয়া) বাবা, চুপ করে বসে থাকলে হবে না, এ চারখানাও খেতে হবে। তিনকড়ি। যে আজ্ঞে। (আহার) ভুতুর বাপের প্রবেশ পিতা। ওকি ও! পাত খালি যে! ওরে, খান-আষ্টেক পিঠে দিয়ে যা। পিঠে-দেওন বাবা, খেতে হবে। এরই মধ্যে হাত গুটোলে চলবে না। তিনকড়ি। যে আজ্ঞে। ( আহার )
পিসিমার প্রবেশ পিসিমা। (ভুতুর মার প্রতি) ও বউ, তিনকড়ির পাত খালি যে! হাঁ করে দাঁড়িয়ে দেখছ কী? ওকে খান-দশেক পিঠে দাও। লজ্জা কোরো না বাবা, ভালো করে খাও। তিনকড়ি। যে আজ্ঞে।
120
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের পেটে ও পিঠে হাস্যকৌতুকের তৃতীয় তথা অন্তিম দৃশ্যের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর পরের দুটি সংলাপ লেখ। তিনকড়ি। (ক্ষীণকন্ঠে) ভুতুবাবু, তোমার বাবা কোথায় হে? বনমালী। বদ্যি ডাকতে গেছে। তিনকড়ি। (কাতর স্বরে) আর বদ্যি ডেকে কী হবে! ওষুধ খাব যে তার জায়গা কোথায়? বনমালী। তোমার পেটে কী হয়েছে তিনকড়িদা? তিনকড়ি। যাই হোক গে, কাল তোমাকে যা শিখিয়েছিলুম মনে আছে কি? বনমালী। আছে। তিনকড়ি। কী বলো দেখি।
বনমালী। পেটে খেলে পিঠে সয়। তিনকড়ি। আজ আর-একটা শেখাব। কথাটা মনে রেখো-- "পিঠে খেলে পেটে সয় না'।
121
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাসের প্রথম অনুচ্ছেদটি দেওয়া হল: অমিত রায় ব্যারিস্টার। ইংরেজি ছাঁদে রায় পদবী "রয়" ও "রে" রূপান্তর যখন ধারণ করলে তখন তার শ্রী গেল ঘুচে কিন্তু সংখ্যা হল বৃদ্ধি। এই কারণে, নামের অসামান্যতা কামনা করে অমিত এমন একটি বানান বানালে যাতে ইংরেজ বন্ধু ও বন্ধুনীদের মুখে তার উচ্চারণ দাঁড়িয়ে গেল-- অমিট রায়ে। এখানে কোন চরিত্রের নাম উল্লেখ করা হয়েছে? তার পেশা কি?
শেষের কবিতার মূল চরিত্র অমিত রায়। এখানে তার নাম উল্লেখ করা হয়েছে। পেশায় তিনি ব্যারিস্টার।
122
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাস থেকে একটি লাইন দেওয়া হল: অমিত বলে, ফ্যাশানটা হল _____, স্টাইলটা হল _____। যথাযথভাবে শূন্যস্থান পূরণ করে বাক্যটি সম্পূর্ণ করুন।
অমিত বলে, ফ্যাশানটা হল মুখোশ, স্টাইলটা হল মুখশ্রী।
123
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাস থেকে একটি অনুচ্ছেদ নিচে দেওয়া হল: সেদিন পিকনিকে গঙ্গার ধারে যখন ও পারের ঘন কালো পুঞ্জীভূত স্তব্ধতার উপরে চাঁদ উঠল, ওর পাশে ছিল লিলি গাঙ্গুলি। তাকে ও মৃদুস্বরে বললে, "গঙ্গার ও পারে ঐ নতুন চাঁদ, আর এ পারে তুমি আর আমি, এমন সমাবেশটি অনন্তকালের মধ্যে কোনাদিনই আর হবে না।" উপরোক্ত অনুচ্ছেদটির ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দিন: কোথায় পিকনিক হচ্ছিল? এখানে কাদের মধ্যে কথোপকথন চলছিল?
শেষের কবিতার প্রদত্ত অনুচ্ছেদটি অনুসারে, গঙ্গার তীরে পিকনিক হচ্ছিল। সেখানে অমিত রায় ও লিলি গাঙ্গুলির মধ্যে বার্তালাপ চলছিল।
124
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাস থেকে একটি অনুচ্ছেদ নিচে দেওয়া হল: "কিন্তু লিলি, কোটি _____ যুগের পর যদি দৈবাৎ তোমাতে আমাতে মঙ্গলগ্রহের _____ অরণ্যের _____ তার কোনো-একটা হাজার-ক্রোশী খালের ধারে মুখোমুখি দেখা হয়, আর যদি শকুন্তলার সেই জেলেটা বোয়াল _____ পেট চিরে আজকের এই অপরূপ সোনার মুহূর্তটিকে আমাদের সামনে এনে ধরে, _____ উঠে মুখ-চাওয়া-চাউয়ি করব, তার পরে কী হবে ভেবে দেখো।" যথাযথভাবে শূন্যস্থান পূরণ করে বাক্যটি সম্পূর্ণ করুন।
"কিন্তু লিলি, কোটি কোটি যুগের পর যদি দৈবাৎ তোমাতে আমাতে মঙ্গলগ্রহের লাল অরণ্যের ছায়ায় তার কোনো-একটা হাজার-ক্রোশী খালের ধারে মুখোমুখি দেখা হয়, আর যদি শকুন্তলার সেই জেলেটা বোয়াল মাছের পেট চিরে আজকের এই অপরূপ সোনার মুহূর্তটিকে আমাদের সামনে এনে ধরে, চমকে উঠে মুখ-চাওয়া-চাউয়ি করব, তার পরে কী হবে ভেবে দেখো।"
125
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাস থেকে একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: লিলি অমিতকে পাখার বাড়ি তাড়না করে বললে, "তার পরে সোনার মুহূর্তটি অন্যমনে খসে পড়বে সমুদ্রের জলে। আর তাকে পাওয়া যাবে না। পাগলা স্যাকরার গড়া এমন তোমার কত মুহূর্ত খসে পড়ে গেছে, ভুলে গেছ বলে তার হিসেব নেই।" প্রশ্ন: এখানে কোন চরিত্রের উল্লেখ করা হয়েছে? তাদের পুরো নাম কি?
উত্তর: এখানে লিলি গাঙ্গুলি ও অমিত রায়ের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
126
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাসের একটি অনুচ্ছেদ নিচে দেওয়া হল: আত্মীয়স্বজন অমিতর বিয়ের _____ ছেড়েই দিয়েছে। তারা ঠিক করেছে, বিয়ের দায়িত্ব নেবার যোগ্যতা ওর নেই, তাই ও কেবল _____ স্বপ্ন দেখে আর উলটো কথা বলে মানুষকে চমক লাগিয়ে বেড়ায়। ওর মনটা _____ আলো, মাঠে বাটে ধাঁধা লাগাতেই আছে, ঘরের মধ্যে তাকে ধরে আনবার জো নেই। যথাযথভাবে শূন্যস্থান পূরণ করে অনুচ্ছেদটি সম্পূর্ণ করুন।
আত্মীয়স্বজন অমিতর বিয়ের আশা ছেড়েই দিয়েছে। তারা ঠিক করেছে, বিয়ের দায়িত্ব নেবার যোগ্যতা ওর নেই, তাই ও কেবল অসম্ভবের স্বপ্ন দেখে আর উলটো কথা বলে মানুষকে চমক লাগিয়ে বেড়ায়। ওর মনটা আলেয়ার আলো, মাঠে বাটে ধাঁধা লাগাতেই আছে, ঘরের মধ্যে তাকে ধরে আনবার জো নেই।
127
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাসের একটি অংশ দেওয়া হল: সেদিনকার বক্তা বলে উঠল, "জানতে পারি কি, কাকে আপনি প্রেসিডেণ্ট করতে চান? তার নাম করুন।" অমিত ফস্‌ করে বললে, "নিবারণ চক্রবর্তী।" প্রশ্ন: অমিত কার নাম প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রস্তাব করেন? কিসের প্রেসিডেন্ট?
উত্তর: অমিত নিবারণ চক্রবর্তীর নাম বালিগঞ্জের সাহিত্যসভার প্রেসিডেন্ট পদের জন্য প্রস্তাব করেন।
128
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাসের একটি অংশ দেওয়া হল: অমিত বেছে বেছে শিলঙ পাহাড়ে গেল। তার কারণ, সেখানে ওর দলের লোক কেউ যায় না। আরো একটা কারণ, ওখানে কন্যাদায়ের বন্যা তেমন প্রবল নয়। অমিতর হৃদয়টার 'পরে যে দেবতা সর্বদা শরসন্ধান করে ফেরেন তাঁর আনাগোনা ফ্যাশানেবল পাড়ায়। প্রশ্ন: অমিত শিলঙ বেড়াতে গেল কেন?
উত্তর: অমিত শিলঙ পাহাড়ে বেড়াতে গেলো কারণ সেখানে তার দলের লোক বিশেষ কেউ যায় না। তাছাড়া সেখানে "কন্যাদায়ের বন্যা তেমন প্রবল নয়" অর্থাৎ অমিতকে সেখানে বিবাহ প্রস্তাবের বিশেষ মুখোমুখি হতে হবে না।
129
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাসের একটি অংশ দেওয়া হল: অমিত বললে, "আমার অপরাধী গাড়িটাকে যদি ক্ষমা করেন তবে আপনি যেখানে অনুমতি করবেন সেইখানেই পৌঁছিয়ে দিতে পারি।" "দরকার হবে না, পাহাড়ে হেঁটে চলা আমার অভ্যেস।" "দরকার আমারই, মাপ করলেন তার প্রমাণ।" প্রশ্ন: অমিত কিভাবে ক্ষমা প্রার্থনা করল?
উত্তর: পাহাড়ের রাস্তায় অমিতের গাড়ির সঙ্গে অপর একটি গাড়ির ধাক্কা লাগে। অমিত সেই গাড়ির যাত্রীর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে এবং নিজের গাড়ি করে সেই যাত্রীকে তার গন্তব্যস্থলে পৌঁছে দেওয়ার প্রস্তাব করে। অমিতের মতে এই প্রস্তাবের গ্রহণের মাধ্যমেই তার ক্ষমা প্রার্থনার সার্থকতা সম্ভব হবে।
130
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের শেষের কবিতা উপন্যাসের একটি অংশ দেওয়া হল: কলকাতার কলেজে পড়ে যতিশংকর। থাকে কলুটোলা প্রেসিডেন্সি কলেজের মেসে। অমিত তাকে প্রায় বাড়িতে নিয়ে আসে, খাওয়ায়, তার সঙ্গে নানা বই পড়ে, নানা অদ্ভুত কথায় তার মনটাকে চমকিয়ে দেয়, মোটরে করে তাকে বেড়িয়ে নিয়ে আসে। প্রশ্ন: যতিশংকর কোথায় থাকে?
উত্তর: যতিশংকর কলুটোলা প্রেসিডেন্সি কলেজের মেসে থাকে।
131
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহুয়া কাব্যগ্রন্থের বিদায় কবিতাটি তার শেষের কবিতা উপন্যাসেও স্থান পেয়েছে। এই কবিতার একটি অংশ নিচে দেওয়া হল, এটি বিশ্লেষণ কর। কালের যাত্রার ধ্বনি শুনিতে কি পাও। তারি রথ নিত্যই উধাও জাগাইছে অন্তরীক্ষে হৃদয়স্পন্দন, চক্রে-পিষ্ট আঁধারের বক্ষফাটা তারার ক্রন্দন।
আক্ষরিক অর্থে, সময় দেখা ও শোনার বাইরে। সেই অদৃশ্যমান অথচ সর্বব্যাপী সময়ের উত্তরণকে বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিবিধ চিত্রকল্প এবং রূপকের মাধ্যমে তার কবিতায় তুলে ধরেছেন। সময় সদাবহমান, নিত্য ধাবমান। সময় যেন রথারূঢ়, এগিয়ে চলেছে প্রচণ্ড গতিতে। সেই রথের চাকায় ভূমি, পাষান, তৃণ, প্রাণ—সকলেই পিষ্ট হয়। তাদের কান্না, চিৎকার, যন্ত্রনা ও আওয়াজ বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ডে প্রতিধ্বনিত হচ্ছে, সেই আওয়াজ যেন অন্তরীক্ষের হৃদয়স্পন্দন, সেই আওয়াজ যেন প্রাণেরই আওয়াজ। কবি বলতে চেয়েছেন যে মানবজীবনও গতিমান রথের মতন। জীবন কখনো থেমে থাকে না। জীবনের যাত্রা কখনো রুক্ষ বা কখনো মসৃন পথ দিয়ে, বহু সুখ দুঃখের মাঝ দিয়ে। জীবনের পথ ঘিরে রয়েছে বহু স্মৃতি, অনুভূতি ও অভিজ্ঞতা। আর এই সমস্ত সম্মিলিত অনুভূতির মাধ্যমেই মানুষ সময়ের উত্তরণকে উপলব্ধি করে। এ অনুভূতি শুধু একজন মানুষের একার নয়—জীবনের পথে চলতে চলতে সংযোগে আসা একাধিক মানুষের আন্তঃ সম্পর্কিত অনুভূতির মাধ্যমেই সময়কে অনুভব করা যায়। মানুষের কান্না কেবলমাত্র দুঃখের নিদর্শন নয়, এই অশ্রু মানুষের অগুনিত সুখ, দুঃখ এবং মানবিক সংযোগের গভীরতা প্রতিনিধিত্ব করে। আকাশের তারাদের কেবল রাতের অন্ধকারেই দেখা যায়, দিনের আলোতে নয়। তেমনই, মানবজীবন যেন জীবনযাপন তথা দৈনিক কাজকর্মের মাঝে—বা দিনের আচ্ছন্নকারী আলোর মাঝে—বিভ্রান্ত। কৈশোর, তারুণ্য ও যৌবন পেরিয়ে জীবনের গোধূলিলগ্ন যেন রাত্রিকালের সমতুল্য। আর সেই রাতের আঁধারেই মানুষ তারাদের দেখতে পায়, যেন এই গভীর নিশাতেই জ্ঞানপ্রাপ্তি সম্ভব। এই প্রসঙ্গে কবির একটি বিখ্যাত রবীন্দ্রসংগীত উদ্ধৃত করা যেতে পারে: "সঘন গহন রাত্রি, ঝরিছে শ্রাবণধারা—"
132
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহুয়া কাব্যগ্রন্থের বিদায় কবিতাটি তার শেষের কবিতা উপন্যাসেও স্থান পেয়েছে। এই কবিতার অন্তিম পংক্তিগুলি নিচে দেওয়া হল। এর বিশ্লেষণ লেখ। হে ঐশ্বর্যবান, তোমারে যা দিয়েছিনু সে তোমারি দান; গ্রহণ করেছ যত ঋণী তত করেছ আমায়। হে বন্ধু, বিদায়।
সাধারণত, দান তিনি করেন যার সবকিছু আছে আর দানগ্রহণ তিনি করেন যার কিছুই নাই। আপাতদৃষ্টিতে কবি যেন দাতা-দানগ্রহণকারীর এই সম্পর্ক উল্টে দিয়েছেন! কিন্তু সূক্ষভাবে দেখলে বোঝা যাবে যে এই দৃষ্টিকোণ কোন পরস্পরবিরোধী দৃষ্টান্ত স্থাপন করে না। দান এক পুণ্য কর্ম, কিন্তু সেই পুণ্যের সার্থকতা লাভ হয় কেবলমাত্র তখনই যখন সেই দান কেউ গ্রহণ করে। এই প্রসঙ্গে মহাভারতের দাতা কর্ণের কথা মনে করা যেতে পারে, যিনি তার কবচ-কুন্দল দেবেন্দ্রকে দান করেছিলেন কারণ দেবেন্দ্র তা চেয়েছিলেন এবং গ্রহণ করেছিলেন। অর্থাৎ, দাতা ও দানগ্রাহক, দুইয়েরই ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। বিদায় কবিতার অন্তিম অংশে কবি মানুষের সম্পর্কের গভীরতা বোঝাতে চেয়ে দান শব্দটি ব্যবহার করেছেন। এখানে ও হেনরির "দা গিফ্ট অফ দা ম্যাজাই" গল্পের কথা উল্লেখ করা যেতে পারে, যার মর্মবস্তু এই যে কোন উপহারের প্রকৃত মূল্য বস্তুগত নয়, উপহারের প্রকৃত মূল্য লুকিয়ে থাকে উপহারদাতা ওর গ্রহণকারীর ভালোবাসার মধ্যে। বিদায় কবিতায় কবি দুটি মানুষের গভীর সম্পর্ক তুলে ধরেছেন। একজনের অপরকে ভালবাসা প্রদান করা যেমন মূল্যবান, তেমনই অপরের সেই ভালবাসা গ্রহণ ও স্বীকার্যের দ্বারাই প্রথমজনের লাভ হয়। অন্যভাবে বলতে গেলে, যিনি ভালবাসা গ্রহণ করেন, তিনি যেন ঐশ্বর্যবান—তার উদারতা ও অনুভূতির স্বীকার্যই অপর ব্যক্তির কাছে দানস্বরূপ। এইভাবে, দাতা তার নিজের স্নেহ ও ভালবাসা প্রকাশ করার অনুমতি দেওয়ার জন্য গ্রহীতার কাছে ঋণী হয়ে থাকে। কবিতার অন্তিমে এইভাবে একজন আরেকজনকে তার গ্রহণের অনুমতির জন্য কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে, প্রিয়জনের কাছে সম্বোধনের সমাপ্তি চিহ্নিত করে এবং বিদায় ও শুভকামনা জানায়।
133
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহুয়া কাব্যগ্রন্থের বিদায় কবিতার একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: ওগো বন্ধু, সেই ধাবমান _____ জড়ায়ে ধরিল মোরে ফেলি তার জাল— তুলে নিল দ্রুতরথে দুঃসাহসী _____ পথে তোমা হতে বহুদূরে। মনে হয় অজস্র মৃত্যুরে পার হয়ে আসিলাম আজি নবপ্রভাতের শিখরচূড়ায়, রথের চঞ্চল বেগ হাওয়ায় উড়ায় আমার পুরানো নাম। প্রদত্ত বিকল্পগুলি থেকে সঠিক উত্তর বেছে নিয়ে শূন্যস্থানগুলি পূর্ণ কর। (ক) কাঠ, জাহাজের (খ) কাল, ভ্রমণের (গ) খাল, কর্মের (ঘ) আজ, ক্রিয়ার
সঠিক উত্তরটি হল: (খ) কাল, ভ্রমণের
134
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহুয়া কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত বিদায় কবিতার একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: ফিরিবার _____ নাহি; দূর হতে যদি দেখ চাহি পারিবে না চিনিতে আমায়। হে বন্ধু, _____। প্রদত্ত বিকল্পগুলি থেকে সঠিক উত্তর বেছে নিয়ে শূন্যস্থানদুটি পূর্ণ কর। (ক) রাস্তা, তোমায় (খ) উপায়, স্বাগতম (গ) পথ, নমস্কার (ঘ) পথ, বিদায়
সঠিক উত্তরটি হল: (ঘ) পথ, বিদায়
135
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের মহুয়া কাব্যগ্রন্থের অন্তর্গত বিদায় কবিতার একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: কোনোদিন কর্মহীন পূর্ণ অবকাশে, বসন্তবাতাসে অতীতের তীর হতে যে _____ বহিবে দীর্ঘশ্বাস, ঝরা বকুলের কান্না ব্যথিবে আকাশ, প্রদত্ত বিকল্পগুলি থেকে সঠিক উত্তর বেছে নিয়ে শূন্যস্থানটি পূর্ণ কর। (ক) রাত্রে (খ) দিনে (গ) সকালে (ঘ) বিকেলে
সঠিক উত্তর: (ক) রাত্রে
136
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিদায় কবিতার একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: তবু সে তো স্বপ্ন নয়, সব চেয়ে সত্য মোর, সেই মৃত্যুঞ্জয়, সে আমার _____। তারে আমি রাখিয়া এলেম অপরিবর্তন অর্ঘ্য তোমার উদ্দেশে। প্রদত্ত বিকল্পগুলি থেকে সঠিক উত্তর বেছে নিয়ে শূন্যস্থানটি পূর্ণ কর। (ক) পীড়া (খ) যন্ত্রনা (গ) প্রেম (ঘ) ক্রোধ
সঠিক উত্তর: (গ) প্রেম
137
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিদায় কবিতার একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: তোমার মানসভোজে সযত্নে সাজালে যে ভাবরসের পাত্র বাণীর তৃষায়, তার সাথে দিব না মিশায়ে যা মোর ধূলির ধন, যা মোর চক্ষের _____ ভিজে। প্রদত্ত বিকল্পগুলি থেকে সঠিক উত্তর বেছে নিয়ে শূন্যস্থানটি পূর্ণ কর। (ক) দৃষ্টিতে (খ) ঘামে (গ) আলোয় (ঘ) জলে
সঠিক উত্তর: (ঘ) জলে
138
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বিদায় কবিতার একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: তোমারে যা দিয়েছিনু, তার পেয়েছ নিঃশেষ অধিকার। হেথা মোর তিলে তিলে দান, করুণ মুহূর্তগুলি _____ ভরিয়া করে পান হৃদয়-অঞ্জলি হতে _____। প্রদত্ত বিকল্পগুলি থেকে সঠিক উত্তর বেছে নিয়ে শূন্যস্থানদুটি পূর্ণ কর। (ক) গণ্ডূষ, মম (খ) হাত, তব (গ) লোটা, মম (ঘ) বুক, তব
সঠিক উত্তর: (ক) গণ্ডূষ, মম
139
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলির ৯১তম কবিতা/গানের প্রথম স্তবকটি নিচে দেওয়া হল: এই করেছ ভালো, নিঠুর, এই করেছ ভালো। এমনি করে _____ মোর তীব্র দহন জ্বালো। আমার এ _____ না পোড়ালে গন্ধ কিছুই নাহি ঢালে, আমার এ _____ না জ্বালালে দেয় না কিছুই _____। শূন্যস্থানগুলি যথাযথ ভাবে পূরণ করে স্তবকটি পুনরায় লেখ।
এই করেছ ভালো, নিঠুর, এই করেছ ভালো। এমনি করে হৃদয়ে মোর তীব্র দহন জ্বালো। আমার এ ধূপ না পোড়ালে গন্ধ কিছুই নাহি ঢালে, আমার এ দীপ না জ্বালালে দেয় না কিছুই আলো।
140
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের গীতাঞ্জলির ৯১তম কবিতা/গানের দ্বিতীয় স্তবকটি নিচে দেওয়া হল: যখন থাকে _____ এ চিত্ত আমার আঘাত সে যে _____ তব সেই তো পুরস্কার। অন্ধকারে মোহে লাজে _____ তোমায় দেখি না যে, _____ তোলো আগুন করে আমার যত কালো। শূন্যস্থানগুলি যথাযথ ভাবে পূরণ করে স্তবকটি পুনরায় লেখ।
যখন থাকে অচেতনে এ চিত্ত আমার আঘাত সে যে পরশ তব সেই তো পুরস্কার। অন্ধকারে মোহে লাজে চোখে তোমায় দেখি না যে, বজ্রে তোলো আগুন করে আমার যত কালো।
141
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আগুনের পরশমণি গানটির কথা নিচে দেওয়া হল। এখানে কয়েকটি শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি _____ দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি যথাযথ ভাবে পূরণ করে সম্পূর্ণ গানের কথা পুনরায় লেখ। আগুনের _____ ছোঁয়াও প্রাণে। এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে ॥ আমার এই _____ তুলে ধরো, তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো— _____ আলোক-শিখা জ্বলুক গানে ॥ আঁধারের গায়ে গায়ে পরশ তব সারা রাত ফোটাক তারা নব নব। _____ দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো, যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো— ব্যথা মোর উঠবে জ্বলে ঊর্ধ্ব পানে ॥
আগুনের পরশমণি ছোঁয়াও প্রাণে। এ জীবন পুণ্য করো দহন-দানে ॥ আমার এই দেহখানি তুলে ধরো, তোমার ওই দেবালয়ের প্রদীপ করো— নিশিদিন আলোক-শিখা জ্বলুক গানে ॥ আঁধারের গায়ে গায়ে পরশ তব সারা রাত ফোটাক তারা নব নব। নয়নের দৃষ্টি হতে ঘুচবে কালো, যেখানে পড়বে সেথায় দেখবে আলো— ব্যথা মোর উঠবে জ্বলে ঊর্ধ্ব পানে ॥
142
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের তবু মনে রেখো গানটির কথা নিচে দেওয়া হল। এখানে কয়েকটি শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি _____ দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি যথাযথ ভাবে পূরণ করে সম্পূর্ণ গানের কথা পুনরায় লেখ। তবু _____ রেখো যদি দূরে যাই চলে। যদি পুরাতন _____ ঢাকা পড়ে যায় নবপ্রেমজালে। যদি থাকি কাছাকাছি, দেখিতে না পাও ছায়ার মতন আছি না আছি— তবু মনে রেখো। যদি _____ আসে আঁখিপাতে, এক দিন যদি _____ থেমে যায় মধুরাতে, তবু মনে রেখো। এক দিন যদি বাধা পড়ে কাজে শারদ প্রাতে— মনে রেখো। যদি পড়িয়া মনে ছলোছলো জল নাই দেখা দেয় নয়নকোণে— তবু মনে রেখো।
তবু মনে রেখো যদি দূরে যাই চলে। যদি পুরাতন প্রেম ঢাকা পড়ে যায় নবপ্রেমজালে। যদি থাকি কাছাকাছি, দেখিতে না পাও ছায়ার মতন আছি না আছি— তবু মনে রেখো। যদি জল আসে আঁখিপাতে, এক দিন যদি খেলা থেমে যায় মধুরাতে, তবু মনে রেখো। এক দিন যদি বাধা পড়ে কাজে শারদ প্রাতে— মনে রেখো। যদি পড়িয়া মনে ছলোছলো জল নাই দেখা দেয় নয়নকোণে— তবু মনে রেখো।
143
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের আমার পরান যাহা চায় গানটির কথা নিচে দেওয়া হল। এখানে কয়েকটি শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি _____ দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি যথাযথ ভাবে পূরণ করে সম্পূর্ণ গানের কথা পুনরায় লেখ। আমার _____ যাহা চায় তুমি তাই, তুমি তাই গো। তোমা ছাড়া আর এ _____ মোর কেহ নাই কিছু নাই গো॥ তুমি সুখ যদি নাহি পাও, যাও সুখের সন্ধানে যাও— আমি তোমারে পেয়েছি _____, আর কিছু নাহি চাই গো॥ আমি তোমার _____ রহিব বিলীন, তোমাতে করিব বাস, দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী, দীর্ঘ বরষ মাস। যদি আর-কারে ভালোবাস, যদি আর ফিরে নাহি আস, তবে, তুমি যাহা চাও, তাই যেন পাও, আমি যত দুখ পাই গো॥
আমার পরান যাহা চায় তুমি তাই, তুমি তাই গো। তোমা ছাড়া আর এ জগতে মোর কেহ নাই কিছু নাই গো॥ তুমি সুখ যদি নাহি পাও, যাও সুখের সন্ধানে যাও— আমি তোমারে পেয়েছি হৃদয়মাঝে, আর কিছু নাহি চাই গো॥ আমি তোমার বিরহে রহিব বিলীন, তোমাতে করিব বাস, দীর্ঘ দিবস, দীর্ঘ রজনী, দীর্ঘ বরষ মাস। যদি আর-কারে ভালোবাস, যদি আর ফিরে নাহি আস, তবে, তুমি যাহা চাও, তাই যেন পাও, আমি যত দুখ পাই গো॥
144
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "মনে কী দ্বিধা রেখে গেলে" গানটির আংশিক কথা নিচে দেওয়া হয়েছে। এখানে কয়েকটি শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি _____ দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি যথাযথ ভাবে পূরণ করে সম্পূর্ণ গানের কথা পুনরায় লেখ। মনে কী _____ রেখে গেলে চলে সে দিন ভরা সাঁঝে, যেতে যেতে দুয়ার হতে কী ভেবে ফিরালে মুখখানি— কী কথা ছিল যে মনে॥ তুমি সে কি হেসে গেলে আঁখিকোণে— আমি বসে বসে ভাবি নিয়ে _____ হৃদয়খানি, তুমি আছ দূর ভুবনে॥ _____ উড়িছে বকপাঁতি, বেদনা আমার তারি সাথি। বারেক তোমায় শুধাবারে চাই _____ কী বল নাই, সে কি রয়ে গেল গো সিক্ত যূথীর গন্ধবেদনে॥
মনে কী দ্বিধা রেখে গেলে চলে সে দিন ভরা সাঁঝে, যেতে যেতে দুয়ার হতে কী ভেবে ফিরালে মুখখানি— কী কথা ছিল যে মনে॥ তুমি সে কি হেসে গেলে আঁখিকোণে— আমি বসে বসে ভাবি নিয়ে কম্পিত হৃদয়খানি, তুমি আছ দূর ভুবনে॥ আকাশে উড়িছে বকপাঁতি, বেদনা আমার তারি সাথি। বারেক তোমায় শুধাবারে চাই বিদায়কালে কী বল নাই, সে কি রয়ে গেল গো সিক্ত যূথীর গন্ধবেদনে॥
145
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "তুমি রবে নীরবে" গানটির আংশিক কথা নিচে দেওয়া হয়েছে। এখানে কয়েকটি শব্দ বাদ দেওয়া হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি _____ দ্বারা নির্দেশিত হয়েছে। শূন্যস্থানগুলি যথাযথ ভাবে পূরণ করে সম্পূর্ণ গানের কথা পুনরায় লেখ। তুমি রবে _____ হৃদয়ে মম নিবিড় নিভৃত পূর্ণিমানিশীথিনী-সম॥ মম জীবন যৌবন মম অখিল ভুবন তুমি _____ গৌরবে নিশীথিনী-সম॥ জাগিবে একাকী তব _____ আঁখি, তব অঞ্চলছায়া মোরে রহিবে ঢাকি। মম দুঃখবেদন মম সফল স্বপন তুমি ভরিবে _____ নিশীথিনী-সম॥
তুমি রবে নীরবে হৃদয়ে মম নিবিড় নিভৃত পূর্ণিমানিশীথিনী-সম॥ মম জীবন যৌবন মম অখিল ভুবন তুমি ভরিবে গৌরবে নিশীথিনী-সম॥ জাগিবে একাকী তব করুণ আঁখি, তব অঞ্চলছায়া মোরে রহিবে ঢাকি। মম দুঃখবেদন মম সফল স্বপন তুমি ভরিবে সৌরভে নিশীথিনী-সম॥
146
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "আমার সকল নিয়ে বসে" গানের কথা নিচে দেওয়া হল: আমার সকল নিয়ে বসে আছি সর্বনাশের আশায়। আমি তার লাগি পথ চেয়ে আছি পথে যে জন ভাসায়॥ যে জন দেয় না দেখা যায় যে দেখে ভালোবাসে আড়াল থেকে, আমার মন মজেছে সেই গভীরের গোপন ভালোবাসায়॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দিন: (ক) বক্তা কিসের আশায় বসে আছেন? (খ) বক্তা কাকে ভালোবেসেছেন?
"আমার সকল নিয়ে বসে" গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া হল: (ক) বক্তা সর্বনাশের আশায় বসে আছেন। (খ) যে দেখা দেয় না কিন্তু আড়াল থেকে ভালোবাসে, তার প্রতি বক্তার ভালোবাসা সূচিত হয়েছে।
147
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে" গানের কথা নিচে দেওয়া হল: সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে, ফুলডোরে বাঁধা ঝুলনা। সেই স্মৃতিটুকু কভু খনে খনে যেন জাগে মনে, ভুলো না ॥ সেদিন বাতাসে ছিল তুমি জানো— আমারি মনের প্রলাপ জড়ানো, আকাশে আকাশে আছিল ছড়ানো তোমার হাসির তুলনা ॥ যেতে যেতে পথে পূর্ণিমারাতে চাঁদ উঠেছিল গগনে। দেখা হয়েছিল তোমাতে আমাতে কী জানি কী মহা লগনে। এখন আমার বেলা নাহি আর, বহিব একাকী বিরহের ভার— বাঁধিনু যে রাখী পরানে তোমার সে রাখী খুলো না, খুলো না ॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দিন: (ক) সেদিন বাতাসে কি ছিল? (খ) পথ চলার সময় রাতের আকাশ কেমন ছিল?
"সেদিন দুজনে দুলেছিনু বনে" গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া হল: (ক) সেদিন বাতাসে বক্তার মনের প্রলাপ জড়ানো ছিল। (খ) সে ছিল পূর্ণিমা রাত এবং আকাশে পূর্ণিমার গোলাকার চাঁদ উঠেছিল।
148
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি গানের কথা নিচে দেওয়া হল: জাগরণে যায় বিভাবরী— আঁখি হতে ঘুম নিল হরি মরি মরি॥ যার লাগি ফিরি একা একা— আঁখি পিপাসিত, নাহি দেখা, তারি বাঁশি ওগো তারি বাঁশি তারি বাঁশি বাজে হিয়া ভরি মরি মরি॥ বাণী নাহি, তবু কানে কানে কী যে শুনি তাহা কেবা জানে। এই হিয়াভরা বেদনাতে, বারি-ছলোছলো আঁখিপাতে, ছায়া দোলে তারি ছায়া দোলে ছায়া দোলে দিবানিশি ধরি মরি মরি॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দিন: (ক) রাত কিভাবে কাটে? (খ) কোন বাদ্যযন্ত্রের শুরে হৃদয় ভরে ওঠে?
প্রদত্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া হল: (ক) রাত না ঘুমিয়ে কাটে। (খ) বাঁশির শুরে হৃদয় ভরে যায়।
149
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের একটি গানের কথা নিচে দেওয়া হল: তুমি কোন্‌ কাননের ফুল, কোন্‌ গগনের তারা। তোমায় কোথায় দেখেছি যেন কোন্‌ স্বপনের পারা ॥ কবে তুমি গেয়েছিলে, আঁখির পানে চেয়েছিলে ভুলে গিয়েছি। শুধু মনের মধ্যে জেগে আছে ওই নয়নের তারা ॥ তুমি কথা কোয়ো না, তুমি চেয়ে চলে যাও। এই চাঁদের আলোতে তুমি হেসে গ'লে যাও। আমি ঘুমের ঘোরে চাঁদের পানে চেয়ে থাকি মধুর প্রাণে, তোমার আঁখির মতন দুটি তারা ঢালুক কিরণধারা ॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দিন: (ক) বক্তা তাকে কিসের সাথে তুলনা করেছেন?
প্রদত্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হল: (ক) বক্তা অপরকে বাগানের ফুল তথা আকাশের তারার সাথে তুলনা করেছেন।
150
একটি রবীন্দ্রসংগীতের কথা নিচে দেওয়া হল: ডেকো না আমারে, ডেকো না, ডেকো না। চলে যে এসেছে মনে তারে রেখো না ॥ আমার বেদনা আমি নিয়ে এসেছি, মূল্য নাহি চাই যে ভালোবেসেছি, কৃপাকণা দিয়ে আঁখিকোণে ফিরে দেখো না ॥ আমার দুঃখজোয়ারের জলস্রোতে নিয়ে যাবে মোরে সব লাঞ্ছনা হতে। দূরে যাব যবে সরে তখন চিনিবে মোরে— আজ অবহেলা ছলনা দিয়ে ঢেকো না ॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দিন: (ক) বক্তা কিসের মূল্য চাইছেননা? (খ) বক্তাকে কখন চেনা যাবে বলে তার ধারণা?
প্রদত্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হল: (ক) বক্তা তার ভালবাসার মূল্য চাইছেননা। (খ) বক্তার মতে, আজ তাকে অবহেলা করা হলেও যখন তিনি দূরে চলে যাবেন, তখন তাকে চেনা যাবে।
151
একটি রবীন্দ্রসংগীতের কথা নিচে দেওয়া হল: পুরানো সেই দিনের কথা ভুলবি কি রে হায়। ও সেই চোখে দেখা, প্রাণের কথা, সে কি ভোলা যায়। আয় আর একটিবার আয় রে সখা, প্রাণের মাঝে আয়। মোরা সুখের দুখের কথা কব, প্রাণ জুড়াবে তায়। মোরা ভোরের বেলা ফুল তুলেছি, দুলেছি দোলায়— বাজিয়ে বাঁশি গান গেয়েছি বকুলের তলায়। হায় মাঝে হল ছাড়াছাড়ি, গেলেম কে কোথায়— আবার দেখা যদি হল, সখা, প্রাণের মাঝে আয়॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দিন: (ক) পুরানো দিনের কথা কেউ ভুলবে না কেন? (খ) তারা একসাথে কিভাবে সময় কাটিয়েছেন?
প্রদত্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া হল: (ক) পুরানো দিনের কথা ভোলা কঠিন। যে দিনগুলো চোখে দেখা—অর্থাৎ সস্বয়ং নিজে অনুভব করা , যেখানে অন্যের স্মৃতি জড়ানো—এবং যে দিনগুলো খোলামেলা ভাবে প্রাণের কথা বলে কেটেছে, সেই হারানো সময়কে কখনই ভোলা যায়না। (খ) তারা সময় কাটিয়েছেন ভোর বেলা ফুল তুলে, দোলায় দুলে, এবং বাঁশি বাজিয়ে বকুল তলায় গান গেয়ে।
152
একটি রবীন্দ্রসংগীতের কথা নিচে দেওয়া হল: চক্ষে আমার তৃষ্ণা, তৃষ্ণা আমার বক্ষ জুড়ে। আমি বৃষ্টিবিহীন বৈশাখী দিন, সন্তাপে প্রাণ যায় যে পুড়ে। ঝড় উঠেছে তপ্ত হাওয়ায় হাওয়ায়, মনকে সুদূর শূন্যে ধাওয়ায়— অবগুণ্ঠন যায় যে উড়ে। যে ফুল কানন করত আলো, কালো হয়ে সে শুকালো। ঝরনারে কে দিল বাধা— নিষ্ঠুর পাষাণে বাঁধা দুঃখের শিখরচূড়ে॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দিন: (ক) প্রথম চার পংক্তির উপর ভিত্তি করে বক্তার পরিস্থিতি বর্ণনা কর।
প্রদত্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দেওয়া হল: (ক) বক্তার পরিস্থিতি অতীব করুণ। তার চোখ-বুক জুড়ে তৃষ্ণা। যেমন বৈশাখের দারুণ দাবদাহে প্রকৃতি ভস্মীভূত হওয়ার পর্যায়ে কপৌচে যায়, তেমনি বক্তার প্রাণ ও দারুণ শোক-সন্তাপ-দুঃখে যেন জ্বলে-পুড়ে উঠেছে।
153
একটি রবীন্দ্রসংগীতের কথা নিচে দেওয়া হল: বড়ো আশা ক'রে এসেছি গো, কাছে ডেকে লও, ফিরায়ো না জননী।। দীনহীনে কেহ চাহে না, তুমি তারে রাখিবে জানি গো। আর আমি-যে কিছু চাহি নে, চরণতলে বসে থাকিব। আর আমি-যে কিছু চাহি নে, জননী ব’লে শুধু ডাকিব। তুমি না রাখিলে, গৃহ আর পাইব কোথা, কেঁদে কেঁদে কোথা বেড়াব– ওই-যে হেরি তমসঘনঘোরা গহন রজনী।। উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নটির উত্তর দিন: বক্তা তার কাছে কি চান?
প্রদত্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া হল: বক্তা তাকে জননী অর্থাৎ মা বলে ডেকেছেন। বক্তার দৈন্যদশা, আর কোথাও যাওয়ার জায়গা নেই। বক্তা কেবল তার জননীর চরণতলে বসে থাকতে চান।
154
একটি রবীন্দ্রসংগীতের কথা নিচে দেওয়া হল: মহাবিশ্বে মহাকাশে মহাকালমাঝে আমি মানব কী লাগি একাকী ভ্রমি বিষ্ময়ে। তুমি আছ বিশ্বেশ্বর সুরপতি অসীম রহস্যে নীরবে একাকী তব আলয়ে। আমি চাহি তোমা-পানে– তুমি মোরে নিয়ত হেরিছ, নিমেষবিহীন নত নয়নে।। উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নটির উত্তর দিন: সংক্ষেপে বক্তার অনুভূতি বর্ণনা কর।
প্রদত্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নটির উত্তর দেওয়া হল: এই পৃথিবী, আকাশ, স্থান ও কালের মাঝে বক্তা নিজের অতিক্ষুদ্র অস্তিত্ব সম্বন্ধে সচেতন। তিনি এই ভেবে বিষ্মিত হচ্ছেন যে এই বিপুল সৃষ্টির মাঝে মানবজাতি একাকী বাস করছে।
155
একটি রবীন্দ্রসংগীতের কথা নিচে দেওয়া হল: ও আমার দেশের মাটি, তোমার 'পরে ঠেকাই মাথা। তোমাতে বিশ্বময়ীর, তোমাতে বিশ্বমায়ের আঁচল পাতা ॥ তুমি মিশেছ মোর দেহের সনে, তুমি মিলেছ মোর প্রাণে মনে, তোমার ওই শ্যামলবরন কোমল মূর্তি মর্মে গাঁথা ॥ ওগো মা, তোমার কোলে জনম আমার, মরণ তোমার বুকে। তোমার 'পরে খেলা আমার দুঃখে সুখে। তুমি অন্ন মুখে তুলে দিলে, তুমি শীতল জলে জুড়াইলে, তুমি যে সকল-সহা সকল-বহা মাতার মাতা ॥ ও মা, অনেক তোমার খেয়েছি গো, অনেক নিয়েছি মা— তবু জানি নে-যে কী বা তোমায় দিয়েছি মা! আমার জনম গেল বৃথা কাজে, আমি কাটানু দিন ঘরের মাঝে— তুমি বৃথা আমায় শক্তি দিলে শক্তিদাতা ॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দিন: (ক) কোথায় মাথা ঠেকানোর কথা বলা হয়েছে? (খ) কবি কেন বলছেন তার জন্ম বৃথা কাজে কাটল?
প্রদত্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দেওয়া হল: (ক) কবি দেশের মাটিতে মাথা ঠেকাচ্ছেন অর্থাৎ মাতৃভূমিকে নত হয়ে প্রণাম জানাচ্ছেন। (খ) কবি মাতৃভূমিকে মায়ের সঙ্গে তুলনা করেছেন—মায়ের কোলে সকালের জন্ম, মায়ের বুকে সবার মৃত্যু, মাকে ঘিরেই আমাদের সকল সুখ-দুঃখ। উল্লেখ্য যে এই কবিতা লেখা হয়েছিল পরাধীন ভারতে, দেশ যখন ইংরেজ শাসনের অধীনে ছিল। কবির আক্ষেপ এই যে সারাজীবন তিনি মায়ের থেকে বা মাতৃভূমির শুধু নিয়েই গেছেন—অন্ন, বস্ত্র, খাদ্য, সম্পদ ইত্যাদি। কিন্তু এর পরিবর্তে কিছুই দিতে পারেননি অর্থাৎ দেশমাতা তখনও পরাধীন—দেশকে স্বাধীন করতে পারেননি। সেইজন্য তার জন্ম—অর্থাৎ তার প্রাণ বা বেঁচে থাকা—বৃথা।
156
কবিগুরুর "বাংলার মাটি, বাংলার জল" গানটি লেখ।
বাংলার মাটি, বাংলার জল, বাংলার বায়ু, বাংলার ফল— পুণ্য হউক, পুণ্য হউক, পুণ্য হউক হে ভগবান ॥ বাংলার ঘর, বাংলার হাট, বাংলার বন, বাংলার মাঠ— পূর্ণ হউক, পূর্ণ হউক, পূর্ণ হউক হে ভগবান ॥ বাঙালির পণ, বাঙালির আশা, বাঙালির কাজ, বাঙালির ভাষা— সত্য হউক, সত্য হউক, সত্য হউক হে ভগবান ॥ বাঙালির প্রাণ, বাঙালির মন, বাঙালির ঘরে যত ভাই বোন— এক হউক, এক হউক, এক হউক হে ভগবান ॥
157
কবিগুরুর রোদন-ভরা এ বসন্ত গানের কথা নিচে দেওয়া হল। রোদন-ভরা এ বসন্ত কখনো আসে নি বুঝি আগে। মোর বিরহবেদনা রাঙালো কিংশুকরক্তিমরাগে। কুঞ্জদ্বারে বনমল্লিকা সেজেছে পরিয়া নব পত্রালিকা, সারা দিন-রজনী অনিমিখা কার পথ চেয়ে জাগে। দক্ষিণসমীরে দূর গগনে একেলা বিরহী গাহে বুঝি গো। কুঞ্জবনে মোর মুকুল যত আবরণবন্ধন ছিঁড়িতে চাহে। আমি এ প্রাণের রুদ্ধ দ্বারে ব্যাকুল কর হানি বারে বারে, দেওয়া হল না যে আপনারে এই ব্যথা মনে লাগে॥ উপরোক্ত প্রথম চার লাইনের ভিত্তিতে, বসন্তের বর্ণনা কি ভাবে দেওয়া হয়েছে?
শীতের অবসানে বসন্ত আসে। বসন্ত নবপ্রাণের, নবযৌবনের, নবপ্রেমের সময়। অথচ বিরহকাতর কবির বসন্ত কান্নায় ভরপুর, যেন তার বেদনার রঙে রাঙা হয়ে পলাশ ফুল ফুটেছে।
158
একটি রবীন্দ্রসংগীতের কথা নিচে দেওয়া হল: বজ্রমানিক দিয়ে গাঁথা, আষাঢ় তোমার মালা। তোমার শ্যামল শোভার বুকে বিদ্যুতেরই জ্বালা ॥ তোমার মন্ত্রবলে পাষাণ গলে, ফসল ফলে— মরু বহে আনে তোমার পায়ে ফুলের ডালা ॥ মরোমরো পাতায় পাতায় ঝরোঝরো বারির রবে গুরুগুরু মেঘের মাদল বাজে তোমার কী উৎসবে। সবুজ সুধার ধারায় প্রাণ এনে দাও তপ্ত ধারায়, বামে রাখ ভয়ঙ্করী বন্যা মরণ-ঢালা ॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দাও: (ক) আষাঢ়ের মালা কি দিয়ে গাঁথা? (খ) আষাঢ়ের মন্ত্রে কি কি হয়?
প্রদত্ত গানের কথার ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর হল: (ক) আষাঢ়ের মালা বজ্রমানিক অর্থাৎ মণিমাণিক্যের ন্যায় জাজ্বল্যমান বজ্রবিদ্যুৎ দিয়ে গাঁথা। (খ) আষাঢ়ের মন্ত্রবলে পাষাণ অর্থাৎ পাথরও যেন গলে যায়। সেই একই মন্ত্রে ফসল ফলে, এমনকি মরুভূমিতেও ফুল ফুঁটে ওঠে।
159
একটি রবীন্দ্রসংগীত নিচে দেওয়া হল: সঘন গহন রাত্রি, ঝরিছে শ্রাবণধারা— অন্ধ বিভাবরী সঙ্গপরশহারা ॥ চেয়ে থাকি যে শূন্যে অন্যমনে সেথায় বিরহিণীর অশ্রু হরণ করেছে ওই তারা ॥ অশত্থপল্লবে বৃষ্টি ঝরিয়া মর্মরশব্দে নিশীথের অনিদ্রা দেয় যে ভরিয়া। মায়ালোক হতে ছায়াতরণী ভাসায় স্বপ্নপারাবারে— নাহি তার কিনারা ॥ উপরোক্ত গানের কথার ভিত্তিতে রাত্রির একটি বর্ণনা দাও।
গভীর রাত্রি, অতীব অন্ধকারে শূন্য দৃশ্যমানতা, নিঃসঙ্গ। বাইরে অঝোরে বৃষ্টিপাত হয়ে চলেছে।
160
একটি রবীন্দ্রসংগীত নিচে দেওয়া হল: হৃদয় আমার নাচে রে আজিকে ময়ূরের মতো নাচে রে। শত বরনের ভাব-উচ্ছ্বাস কলাপের মতো করেছে বিকাশ, আকুল পরান আকাশে চাহিয়া উল্লাসে কারে যাচে রে॥ ওগো, নির্জনে বকুলশাখায় দোলায় কে আজি দুলিছে, দোদুল দুলিছে॥ ঝরকে ঝরকে ঝরিছে বকুল, আঁচল আকাশে হতেছে আকুল, উড়িয়া অলক ঢাকিছে পলক-- কবরী খসিয়া খুলিছে। ঝরে ঘনধারা নবপল্লবে, কাঁপিছে কানন ঝিল্লির রবে-- তীর ছাপি নদী কলকল্লোলে এল পল্লির কাছে রে॥ এখানে কোন ঋতুর বর্ণনা দেওয়া হয়েছে?
গানটিতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বর্ষা তথা বর্ষার প্রকৃতির বর্ণনা করেছেন।
161
নিম্নলিখিত রবীন্দ্রসংগীতগুলোর রাগ, তাল ও রচনাকাল লিখুন। একটি টেবিল আকারে দেখান। ঝরা পাতা গো, আমি তোমারি দলে এসো শ্যামল সুন্দর গহন রাতে শ্রাবণধারা পড়িছে ঝরে আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে মোর বীণা ওঠে কোন্‌ সুরে বাজি কোন্‌ নব চঞ্চল ছন্দে সঘন গহন রাত্রি, ঝরিছে শ্রাবণধারা
অবশ্যই! অনুরোধ করা তথ্য নিচের টেবিলে দেখান হল: | রবীন্দ্রসংগীত | রাগ | তাল | রচনাকাল (বঙ্গাব্দ) | রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ) | | :-------- | :------- | :------- | -------: | --------: | | ঝরা পাতা গো, আমি তোমারি দলে | ভৈরবী | দাদরা | ১৩৩৭ | ১৯৩১ | | এসো শ্যামল সুন্দর | দেশ | ত্রিতাল | ১৩৪৪ | ১৯৩৭ | | গহন রাতে শ্রাবণধারা পড়িছে ঝরে | দেশ | দাদরা | ১৩৩২ | ১৯২৫ | | আজি ঝড়ের রাতে তোমার অভিসার | মল্লার | ঝম্পক | ১৩১৬ | ১৯০৯ | | পাগলা হাওয়ার বাদল-দিনে | বাউল | দাদরা | ১৩৪৬ | ১৯৩৯ | | মোর বীণা ওঠে কোন্‌ সুরে বাজি কোন্‌ নব চঞ্চল ছন্দে | ভৈরবী | কাহারবা | ১৩২৬ | ১৯১৯ | | সঘন গহন রাত্রি, ঝরিছে শ্রাবণধারা | মিশ্র বাগেশ্রী-মল্লার | কাহারবা | ১৩৪৬ | ১৯৩৯ |
162
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের চিত্রাঙ্গদা নৃত্যনাট্যের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: পাণ্ডব আমি অর্জুন গাণ্ডীবধন্বা নৃপতিকন্যা। লহো মোর খ্যাতি, লহো মোর কীর্তি, লহো পৌরুষ-গর্ব। লহো আমার সর্ব॥ প্রশ্ন: গাণ্ডীব কি?
উত্তর: মহাভারতে অর্জুনের ধনুকের নাম গাণ্ডীব। খাণ্ডবপ্রস্থদাহনের প্রাক্কালে অর্জুন অগ্নিদেবের কাছে একটি স্বর্গীয় ধনুক প্রার্থনা করে। অগ্নিদেবের অনুরোধে বরুণদেব অর্জুনকে গাণ্ডীব প্রদান করেন। যেহেতু গাণ্ডীব ধনুক তার, সেহেতু অর্জুনের অপর নাম গাণ্ডীবধন্বা।
163
নিচে কয়েকটি রবীন্দ্রসংগীত দেওয়া হল। এগুলোর রাগ, তাল ও রচনাকাল লিখুন। একটি টেবিল আকারে দেখান। মনে রবে কি না রবে আমারে আসা-যাওয়ার পথের ধারে গান গেয়ে মোর কেটেছে দিন কেটেছে একেলা বিরহের বেলা চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে
অবশ্যই! অনুরোধনুসারে নিচের টেবিলে রবীন্দ্রসংগীতগুলির বিস্তারিত তথ্য দেখান হল: | রবীন্দ্রসংগীত | রাগ | তাল | রচনাকাল (বঙ্গাব্দ) | রচনাকাল (খৃষ্টাব্দ) | | :-------- | :------- | :------- | -------: | --------: | | মনে রবে কি না রবে আমারে | খাম্বাজ | কাহারবা | ১৩৩৩ | ১৯২৭ | | আসা-যাওয়ার পথের ধারে গান গেয়ে মোর কেটেছে দিন | ইমনকল্যাণ | দাদরা | ১৩২৮ | ১৯২২ | | কেটেছে একেলা বিরহের বেলা | মিশ্র দেশ | কাহারবা | ১৩৪২ | ১৯৩৬ | | চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে | পিলু | দাদরা | ১৩৩৬ | ১৯২৯ |
164
একটি রবীন্দ্রসংগীতের প্রথম দুটি লাইন নিচে দেওয়া হল। পুরো গানটি লিখুন। মনে রবে কি না রবে আমারে সে আমার মনে নাই। ক্ষণে ক্ষণে আসি তব দুয়ারে, অকারণে গান গাই॥
মনে রবে কি না রবে আমারে সে আমার মনে নাই। ক্ষণে ক্ষণে আসি তব দুয়ারে, অকারণে গান গাই॥ চলে যায় দিন, যতখন আছি পথে যেতে যদি আসি কাছাকাছি তোমার মুখের চকিত সুখের হাসি দেখিতে যে চাই— তাই অকারণে গান গাই॥ ফাগুনের ফুল যায় ঝরিয়া ফাগুনের অবসানে— ক্ষণিকের মুঠি দেয় ভরিয়া, আর কিছু নাহি জানে। ফুরাইবে দিন, আলো হবে ক্ষীণ, গান সারা হবে, থেমে যাবে বীন, যতখন থাকি ভরে দিবে না কি এ খেলারই ভেলাটাই— তাই অকারণে গান গাই॥
165
একটি রবীন্দ্রসংগীতের শুরুর একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। পুরো গানটি বলতে পারবেন? আসা-যাওয়ার পথের ধারে গান গেয়ে মোর কেটেছে দিন। যাবার বেলায় দেব কারে বুকের কাছে বাজল যে বীন॥ সুরগুলি তার নানা ভাগে
অবশ্যই! সম্পূর্ণ গানটির কথা নিচে দেওয়া হল: আসা-যাওয়ার পথের ধারে গান গেয়ে মোর কেটেছে দিন। যাবার বেলায় দেব কারে বুকের কাছে বাজল যে বীন॥ সুরগুলি তার নানা ভাগে রেখে যাব পুষ্পরাগে, মীড়গুলি তার মেঘের রেখায় স্বর্ণলেখায় করব বিলীন॥ কিছু বা সে মিলনমালায় যুগলগলায় রইবে গাঁথা, কিছু বা সে ভিজিয়ে দেবে দুই চাহনির চোখের পাতা। কিছু বা কোন্‌ চৈত্রমাসে বকুল-ঢাকা বনের ঘাসে মনের কথার টুকরো আমার কুড়িয়ে পাবে কোন উদাসীন॥
166
আচ্ছা, এটা কোন রবীন্দ্রসংগীত? কেটেছে একেলা বিরহের বেলা
"কেটেছে একেলা বিরহের বেলা" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-রচিত একটি বিখ্যাত গান। গানটির রাগ মিশ্র দেশ, তাল কাহারবা। গানটি রচিত হয় ১৫ মাঘ ১৩৪২ (খৃষ্টাব্দ: ২৯ জানুয়ারি ১৯৩৬)। গানটির রচনাস্থান হল শান্তিনিকেতন এবং স্বরলিপিকার হলেন শৈলজারঞ্জন মজুমদার। সম্পূর্ণ গানটির কথা নিচে দেওয়া হল: কেটেছে একেলা বিরহের বেলা আকাশকুসুমচয়নে। সব পথ এসে মিলে গেল শেষে তোমার দুখানি নয়নে॥ দেখিতে দেখিতে নূতন আলোকে কি দিল রচিয়া ধ্যানের পুলকে নূতন ভুবন নূতন দ্যুলোকে মোদের মিলিত নয়নে॥ বাহির-আকাশে মেঘ ঘিরে আসে, এল সব তারা ঢাকিতে। হারানো সে আলো আসন বিছালো শুধু দুজনের আঁখিতে। ভাষাহারা মম বিজন রোদনা প্রকাশের লাগি করেছে সাধনা, চিরজীবনেরি বাণীর বেদনা মিটিল দোঁহার নয়নে॥
167
এটা কোন রবীন্দ্রসংগীত? "চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে"
"চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর-রচিত একটি বিখ্যাত গান। গানটির রাগ পিলু ও তাল দাদরা। গানটি রচিত হয় ১৩৩৬ বঙ্গাব্দে অর্থাৎ ১৯২৯খ্রিস্টাব্দে।গানটির স্বরলিপিকার হলেন অনাদিকুমার দস্তিদার এবং দিনেন্দ্রনাথ ঠাকুর। সম্পূর্ণ গানটির কথা নিচে দেওয়া হল: চাঁদের হাসির বাঁধ ভেঙেছে, উছলে পড়ে আলো। ও রজনীগন্ধা, তোমার গন্ধসুধা ঢালো ॥ পাগল হাওয়া বুঝতে নারে ডাক পড়েছে কোথায় তারে— ফুলের বনে যার পাশে যায় তারেই লাগে ভালো ॥ নীল গগনের ললাটখানি চন্দনে আজ মাখা, বাণীবনের হংসমিথুন মেলেছে আজ পাখা। পারিজাতের কেশর নিয়ে ধরায়, শশী, ছড়াও কী এ। ইন্দ্রপুরীর কোন্‌ রমণী বাসরপ্রদীপ জ্বালো ॥
168
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "আমার প্রাণের পরে চলে গেল কে" গানটি বলতে পারবেন?
নিশ্চই! সম্পূর্ণ রবীন্দ্রসংগীতটির কথা নিচে দেওয়া হল: আমার প্রাণের 'পরে চলে গেল কে বসন্তের বাতাসটুকুর মতো। সে যে ছুঁয়ে গেল, নুয়ে গেল রে— ফুল ফুটিয়ে গেল শত শত। সে চলে গেল, বলে গেল না— সে কোথায় গেল ফিরে এল না। সে যেতে যেতে চেয়ে গেল কী যেন গেয়ে গেল— তাই আপন-মনে বসে আছি কুসুমবনেতে। সে ঢেউয়ের মতন ভেসে গেছে, চাঁদের আলোর দেশে গেছে, যেখান দিয়ে হেসে গেছে, হাসি তার রেখে গেছে রে— মনে হল আঁখির কোণে আমায় যেন ডেকে গেছে সে। আমি কোথায় যাব, কোথায় যাব, ভাবতেছি তাই একলা বসে। সে চাঁদের চোখে বুলিয়ে গেল ঘুমের ঘোর। সে প্রাণের কোথায় দুলিয়ে গেল ফুলের ডোর। কুসুমবনের উপর দিয়ে কী কথা সে বলে গেল, ফুলের গন্ধ পাগল হয়ে সঙ্গে তারি চলে গেল। হৃদয় আমার আকুল হল, নয়ন আমার মুদে এলে রে— কোথা দিয়ে কোথায় গেল সে॥
169
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গুপ্তধন গল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: অমাবস্যার নিশীথ রাত্রি। মৃত্যুঞ্জয় তান্ত্রিক মতে তাহাদের বহুকালের গৃহদেবতা জয়কালীর পূজায় বসিয়াছে। পূজা সমাধা করিয়া যখন উঠিল তখন নিকটস্থ আমবাগান হইতে প্রত্যুষের প্রথম কাক ডাকিল। প্রশ্ন: মৃত্যুঞ্জয়ের পূজা কখন শেষ হয়?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের পূজা শেষ হতে হতে প্রত্যুষ অর্থাৎ সূর্যোদয় হয়ে যায়।
170
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গুপ্তধন গল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর ভিত্তিতে নিচের প্রশ্নের উত্তর দিন। অমাবস্যার নিশীথ রাত্রি। মৃত্যুঞ্জয় তান্ত্রিক মতে তাহাদের বহুকালের গৃহদেবতা জয়কালীর পূজায় বসিয়াছে। পূজা সমাধা করিয়া যখন উঠিল তখন নিকটস্থ আমবাগান হইতে প্রত্যুষের প্রথম কাক ডাকিল। মৃত্যুঞ্জয় পশ্চাতে ফিরিয়া চাহিয়া দেখিলেন মন্দিরের দ্বার রূদ্ধ রহিয়াছে। তখন সে একবার দেবীর চরণতলে মস্তক ঠেকাইয়া তাঁহার আসন সরাইয়া দিল। সেই আসনের নীচে হইতে একটি কাঁঠালকাঠের বাক্স বাহির হইল। পৈতায় চাবি বাঁধা ছিল। সেই চাবি লাগাইয়া মৃত্যুঞ্জয় বাক্সটি খুলিল। খুলিবামাত্রই চমকিয়া উঠিয়া মাথায়ে করাঘাত করিল। প্রশ্ন: উক্ত বাক্সটি কোথায় ছিল? সেটি কি দিয়ে নির্মিত? বাক্সর চাবি কোথায় ছিল?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের গৃহদেবতা জয়কালীর আসনের নিচে বাক্সটি ছিল। বাক্সটি কাঁঠালকাঠের তৈরি। বাক্সের চাবি মৃত্যুঞ্জয়ের পৈতায় বাঁধা ছিল।
171
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গুপ্তধন গল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর ভিত্তিতে নিচের প্রশ্নের উত্তর দিন। মৃত্যুঞ্জয় যখন শিশু ছিল, যখন তাহার পিতামহ একদিন এই চণ্ডীমন্ডপে বসিয়া তামাক খাইতেছিল,তখন এমনি করিয়াই একটি সন্ন্যাসী জয় হোক বাবা বলিয়া এই প্রাঙ্গণে আসিয়া দাঁড়াইয়াছিলেন। হরিহর সেই সন্ন্যাসীকে কয়েকদিন বাড়িতে রাখিয়া বিধিমত সেবার দ্বারা সন্তুষ্ট করিল। প্রশ্ন: মৃত্যুঞ্জয়ের পিতামহর নাম কি?
উত্তর: মৃত্যুঞ্জয়ের পিতামহর নাম হরিহর।
172
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা গুপ্তধন গল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর ভিত্তিতে নিচের প্রশ্নের উত্তর দিন। হরিহরের অন্য সমস্ত কাজকর্ম নষ্ট হইল— গুপ্ত ঐশ্বর্যের ধ্যান এক মুহূর্ত সে ছাড়িতে পারিল না। মৃত্যুকাল উপস্থিত হইলে সে তাহার বড়ো ছেলে শ্যামাপদকে এই সন্ন্যাসীদত্ত কাগজখানি দিয়া গেল। প্রশ্ন: হরিহরের বড় ছেলের নাম কি?
উত্তর: হরিহরের বড় ছেলের নাম শ্যামাপদ।
173
"সন্ন্যাসী ঘরে প্রবেশ করিয়া কহিলেন, 'মৃত্যুঞ্জয়, কী চাও।' সে বলিয়া উঠিল, 'আমি আর কিছুই চাই না— আমি এই সুরঙ্গ হইতে, অন্ধকার হইতে, গোলকধাঁধা হইতে, এই সোনার গারদ হইতে, বাহির হইতে চাই। আমি আলোক চাই, আকাশ চাই, মুক্তি চাই।'" গুপ্তধন গল্পের শেষে মৃত্যুঞ্জয় কি বলতে চাইছে? সে কি গুপ্তধন পায়?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "গুপ্তধন" গল্পে মৃত্যুঞ্জয় গুপ্তধনের সন্ধান করে। এক সন্ন্যাসীর সাহায্যে—বস্তুত পক্ষে যিনি মৃত্যুঞ্জয়ের পিতামহের ছোট ভাই—এক সুড়ঙ্গের ভিতর স্বর্ণভাণ্ডারের সন্ধান পায়। সেখানে সব দেয়াল সোনার পাত দিয়ে মোড়া, দেখে মনে হয় যেন প্রাচীন সেই ঘরে সূর্যালোকের ঢেউ খেলছে। কিন্তু তার প্রাথমিক উচ্ছাস ক্রমশ আতঙ্কে পরিণত হয়। মৃত্যুঞ্জয় অনুভব করে যে সেই স্বর্ণভাণ্ডার আসলে এক বিভীষিকা—সোনার স্তুপের প্রাণ নেই, স্পন্দন নেই। চিরস্থির, নির্বাক স্বর্ণভাণ্ডার আলো, বাতাস, আকাশ, মুক্তি কিছুই চায় না। সে স্বর্ণভাণ্ডার আসলে যেন সোনার গারদ! মৃত্যুঞ্জয়ের মনে পরে যায় জীবনের কথা, প্রাণময় গ্রামের কথা। তার মনে পরে যায় গ্রামের সূর্যোদয়, গোধূলি ও সূর্যাস্তের কথা। এই উপলব্ধির পরে মৃত্যুঞ্জয়ের সোনার প্রতি লোভ ও মোহ কেটে যায়। অবশেষে সে গুপ্তধন প্রত্যাখ্যান করে মুক্ত জীবন বেঁচে নেয়।
174
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কাবুলিওয়ালা" গল্পের প্রথম অনুচ্ছেদটি নিচে দেওয়া হল: আমার পাঁচ বছর বয়সের ছোটো মেয়ে মিনি এক দণ্ড কথা না কহিয়া থাকিতে পারে না। পৃথিবীতে জন্মগ্রহণ করিয়া ভাষা শিক্ষা করিতে সে কেবল একটি বৎসর কাল ব্যয় করিয়াছিল, তাহার পর হইতে যতক্ষণ সে জাগিয়া থাকে এক মুহূর্ত মৌনভাবে নষ্ট করে না। তাহার মা অনেকসময় ধমক দিয়া তাহার মুখ বন্ধ করিয়া দেয়, কিন্তু আমি তাহা পারি না। মিনি চুপ করিয়া থাকিলে এমনি অস্বাভাবিক দেখিতে হয় যে, সে আমার বেশিক্ষণ সহ্য হয় না। এইজন্য আমার সঙ্গে তাহার কথোপকথনটা কিছু উৎসাহের সহিত চলে। উপরক্ত অনুচ্ছেদটি অনুযায়ী মিনির বয়স কত? কত বছর বয়সে সে কথা বলা শুরু করে?
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কাবুলিওয়ালা" গল্পে মিনির বয়স পাঁচ। সে এক বছর ব্যাস থেকেই কথা বলা শুরু করে দেয়।
175
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কাবুলিওয়ালা" গল্পের প্রথম একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর ভিত্তিতে কাবুলিওয়ালার বর্ণনা দাও। আমার ঘর পথের ধারে। হঠাৎ মিনি আগ্‌ডুম-বাগ্‌ডুম খেলা রাখিয়া জানালার ধারে ছুটিয়া গেল এবং চীৎকার করিয়া ডাকিতে লাগিল, 'কাবুলিওয়ালা, ও কাবুলিওয়ালা।' ময়লা ঢিলা কাপড় পরা, পাগড়ি মাথায়, ঝুলি ঘাড়ে, হাতে গোটাদুই-চার আঙুরের বাক্স, এক লম্বা কাবুলিওয়ালা মৃদুমন্দ গমনে পথ দিয়া যাইতেছিল— তাহাকে দেখিয়া আমার কন্যারত্নের কিরূপ ভাবোদয় হইল বলা শক্ত, তাহাকে ঊর্ধ্বশ্বাসে ডাকাডাকি আরম্ভ করিয়া দিল। আমি ভাবিলাম, এখনই ঝুলিঘাড়ে একটা আপদ আসিয়া উপস্থিত হইবে, আমার সপ্তদশ পরিচ্ছেদ আর শেষ হইবে না।
কাবুলিওয়ালার পরনে ময়লা ঢিলা কাপড়। তার মাথায় পাগড়ি। তার ঘাড়ে একটি ঝুলি এবং তার হাতে কয়েকটা আঙুরের বাক্স। কাবুলিওয়ালা আস্তে আস্তে হেটে চলেছে।
176
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কাবুলিওয়ালা" গল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এখানে গল্পের কোন থিম ভেসে ওঠে? দেখিলাম, এই দুটি বন্ধুর মধ্যে গুটিকতক বাঁধা কথা এবং ঠাট্টা প্রচলিত আছে— যথা, রহমতকে দেখিবামাত্র আমার কন্যা হাসিতে হাসিতে জিজ্ঞাসা করিত, 'কাবুলিওয়ালা, ও কাবুলিওয়ালা, তোমার ও ঝুলির ভিতর কী।' রহমত একটা অনাবশ্যক চন্দ্রবিন্দু যোগ করিয়া হাসিতে হাসিতে উত্তর করিত, 'হাঁতি।' অর্থাৎ তাহার ঝুলির ভিতরে যে একটা হস্তী আছে, এইটেই তাহার পরিহাসের সূক্ষ্ণ মর্ম। খুব যে বেশি সূক্ষ্ণ তাহা বলা যায় না, তথাপি এই পরিহাসে উভয়েই বেশ-একটু কৌতুক অনুভব করিত— এবং শরৎকালের প্রভাতে একটি বয়স্ক এবং একটি অপ্রাপ্তবয়স্ক শিশুর সরল হাস্য দেখিয়া আমারও বেশ লাগিত।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কাবুলিওয়ালা" গল্পের প্রধান থিমগুলির মধ্যে অন্যতম হল মিনি এবং কাবুলিওয়ালার মধ্যে বন্ধুত্ব। মিনি পাঁচ বছর বয়সের বালিকা। অন্যদিকে রহমত মিনির চেয়ে বয়সে অনেক বড়। মিনি বাঙালি, রহমত আফগান, বিদেশী। তাদের দুজনের ভাষা, পোশাক, আচার-আচরণের মধ্যে ব্যবধান অনেক। কিন্তু বন্ধুত্ব স্থান-কালের সীমানা মানেনা। তাই দুজনের মধ্যে এতো পার্থ্যক থাকা সত্ত্বেও মিনি ও রহমতের মধ্যে বন্ধুত্ব স্থাপিত হয়। যদিও শুরুতে অচেনা এক মানুষের প্রতি মিনির মনে ভীতি ছিল, সেই ভয় দ্রুত লোপ পায়। কৌতূহলবশত মিনি খেলাচ্ছলে কাবুলিওয়ালাকে জিজ্ঞেস করে তার ঝুলির ভিতর কি আছে। রহমতও কৌতুকপূর্ণভাবে উত্তর দেয় যে তার ঝুলির ভিতরে হাতি আছে। একটি অপ্রত্যাশিত এবং বিদেশী টানযুক্ত উত্তর, একটি ঝুলিতে হাতি, রহমতের কল্পনা এবং তার কৌতূহল প্রবৃত্তির তার আকাঙ্ক্ষা বোঝার ইঙ্গিত দেয়। আপাতদৃষ্টিতে এই তুচ্ছ বিনিময় গল্পের প্রেক্ষাপটে গভীর তাৎপর্য ধারণ করে। এটি মিনি এবং রহমতের মধ্যে একটি অসম্ভাব্য বন্ধুত্বের সূচনা করে, একটি বন্ধন যা সামাজিক সীমানা এবং বয়সের পার্থক্য অতিক্রম করে। তাদের কৌতুকপূর্ণ বার্তালাপ একটি গভীর সংযোগের ভিত্তি স্থাপন করে যা গল্পের অগ্রগতির সাথে সাথে উন্মোচিত হবে।
177
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কাবুলিওয়ালা" ছোটগল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর ভিত্তিতে প্রশ্নগুলির উত্তর দাও। কত বৎসর কাটিয়া গেল। আর-একটি শরৎকাল আসিয়াছে। আমার মিনির বিবাহের সম্বন্ধ স্থির হইয়াছে। পূজার ছুটির মধ্যেই তাহার বিবাহ হইবে। কৈলাসবাসিনীর সঙ্গে সঙ্গে আমার ঘরের আনন্দময়ী পিতৃভবন অন্ধকার করিয়া পতিগৃহে যাত্রা করিবে। প্রশ্ন: মিনির বিয়ে কবে? পিতৃভবন অন্ধকার হবে কেন?
উত্তর: রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "কাবুলিওয়ালা" গল্পে এক শরতের শুরুতে মিনির বিয়ের সম্বন্ধ স্থির হয়। পূজার ছুটির মধ্যেই অর্থাৎ শরতের মধ্যেই বিয়ে সম্পন্ন হবে বলে আশা করা যায়। শরৎকালের সঙ্গে বাঙালির এক গভীর সম্পর্ক রয়েছে। শরৎকালে দুর্গাপুজো অনুষ্ঠিত হয়। এইসময় মা দূর্গা তাঁর দুই মেয়ে, লক্ষ্মী ও সরস্বতী, এবং দুই ছেলে, গনেশ ও কার্তিক, সমেত কৈলাশ থেকে মর্তে তাঁর পিতৃগৃহে আগমণ করেন। দুর্গাপুজো বাঙালির সবথেকে বড় উৎসব। বাঙালির প্রাণমন উৎসবের আনন্দে ভরে ওঠে, বাড়িঘর ও পূজা মণ্ডপ আলোকসজ্জায় সেজে ওঠে। দশমীতে বিসর্জনের সাথে দেবী দুর্গা পিতৃগৃহ ত্যাগ করে পুনরায় স্বর্গলোকে ফিরে যান। কন্যার প্রত্যাবর্তনের ফলে পিতৃগৃহ বিষন্নতায় ভরে ওঠে। অন্তরে আনন্দদীপ নিভে যাওয়ায় যেন চারিদিক অন্ধকার কবলিত হয়ে পরে। সেইজন্য লেখক বলতে চেয়েছেন যে মিনির বিয়ের পরে তার বাবার বাড়িও অন্ধকারে ঢাকা পরে যাবে।
178
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "তারাপ্রসন্নের কীর্তি" ছোটগল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: লেখকজাতির প্রকৃতি অনুসারে তারাপ্রসন্ন কিছু লাজুক এবং মুখচোরা ছিলেন। লোকের কাছে বাহির হইতে গেলে তাঁহার সর্বনাশ উপস্থিত হইত। ঘরে বসিয়া কলম চালাইয়া তাঁহার দৃষ্টিশক্তি ক্ষীণ, পিঠ একটু কুঁজা, সংসারের অভিজ্ঞতা অতি অল্প। লৌকিকতার বাঁধি বোলসকল সহজে তাঁহার মুখে আসিত না, এইজন্য গৃহদুর্গের বাহিরে তিনি আপনাকে কিছুতেই নিরাপদ মনে করিতেন না। উপরোক্ত অনুচ্ছেদটি অনুযায়ী তারাপ্রসন্নর পেশা কি?
তারাপ্রসন্ন একজন লেখক।
179
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "তারাপ্রসন্নের কীর্তি" গল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: ঘরের লোকের কাছে তারাপ্রসন্নের ভাব অন্যরূপ; এমন-কি, তাঁহার নিজের স্ত্রী দাক্ষায়ণীও তাঁহার সহিত কথায় আঁটিয়া উঠিতে পারেন না। গৃহিণী কথায় কথায় বলেন, "নেও নেও, আমি হার মানলুম। আমার এখন অন্য কাজ আছে।" বাগ্‌যুদ্ধে স্ত্রীকে আত্মমুখে পরাজয় স্বীকার করাইতে পারে, এমন ক্ষমতা এবং এমন সৌভাগ্য কয়জন স্বামীর আছে। প্রশ্ন: তারাপ্রসন্নর স্ত্রীর নাম কি? সেই নামের অর্থ কি?
উত্তর: তারাপ্রসন্নর স্ত্রীর নাম দাক্ষায়ণী। দাক্ষায়ণীর অর্থ হল প্রজাপতি দক্ষের কন্যা, অর্থাৎ সতী।
180
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "তারাপ্রসন্নের কীর্তি" গল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: কলিকাতায় আসিয়া তারাপ্রসন্ন তাঁহার চতুর সঙ্গীর সাহায্যে "বেদান্তপ্রভাকর" প্রকাশ করিলেন। দাক্ষায়ণীর গহনা বন্ধক রাখিয়া যে-টাকাক'টি পাইয়াছিলেন তাহার অধিকাংশই খরচ হইয়া গেল। প্রশ্ন: তারাপ্রসন্নর লেখা বইয়ের নাম কি?
উত্তর: তারাপ্রসন্নর লেখা বইয়ের নাম বেদান্তপ্রভাকর।
181
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "তারাপ্রসন্নের কীর্তি" গল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল। এর ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দিন। মুহূর্তপরে একটা জিনিস পাড়িতে গিয়া ফেলিয়া দিলেন— তার পরে নিজের বড়োমেয়েকে সম্বোধন করিয়া বলিলেন, "শশী, বাবার বই পড়তে ইচ্ছে হয়েছে বুঝি? তা নে-না মা, পড়্‌-না। তাতে লজ্জা কী।" বাবার বহির প্রতি শশীর কিছুমাত্র আগ্রহ ছিল না। প্রশ্ন: তারাপ্রসন্নর বড় মেয়ের নাম কি?
উত্তর: তারাপ্রসন্নর বড় মেয়ের নাম শশী।
182
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "তারাপ্রসন্নের কীর্তি" গল্পের একটি অংশ নিচে দেওয়া হল: তখন তারাপ্রসন্ন একখানি "গৌড়বার্তাবহ" আনিয়া গৃহিণীর ক্রোড়ে মেলিয়া দিলেন। পাঠ করিয়া তিনি মনে মনে সম্পাদকের অক্ষয় ধনপুত্র কামনা করিলেন; এবং তাঁহার লেখনীরী মুখে মানসিক পুষ্পচন্দন-র অর্ঘ্য উপহার দিলেন। পাঠ সমাপন করিয়া আবার স্বামীর মুখের দিকে চাহিলেন। স্বামী তখন "নবপ্রভাত" আনিয়া খুলিয়া দিলেন। পাঠ করিয়া আনন্দবিহ্বলা দাক্ষায়ণী আবার স্বামীর মুখের প্রতি প্রত্যাশাপূর্ণ স্নিগ্ধনেত্র উত্থাপিত করিলেন। তখন তারাপ্রসন্ন একখণ্ড "যুগান্তর" বাহির করিলেন। তাহার পর? তাহার পর "ভারতভাগ্যচক্র"। তাহার পর? তাহার পর "শুভজাগরণ"। তাহার পর "অরুণালোকে", তাহার পর "সংবাদতরঙ্গভঙ্গ"। উপরের অংশে কোন কোন সংবাদপত্রের নাম উল্লেখ করা হয়েছে? একটি তালিকা হিসেবে দেখাও।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "তারাপ্রসন্নের কীর্তি" গল্পের প্রদত্ত অংশে নিম্নলিখিত সংবাদপত্রগুলোর নাম উল্লেখ করা হয়েছে: - গৌড়বার্তাবহ - নবপ্রভাত - যুগান্তর - ভারতভাগ্যচক্র - শুভজাগরণ - অরুণালোকে - সংবাদতরঙ্গভঙ্গ
183
"পোস্টমাস্টার" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি ছোট গল্প। গল্পটির থেকে একটি অংশ নীচে উদ্ধৃত করা হল। এর ভিত্তিতে প্রশ্নের উত্তর দিন: পোস্টঅফিসটি কোথায় অবস্থিত? প্রথম কাজ আরম্ভ করিয়াই উলাপুর গ্রামে পোস্টমাস্টারকে আসিতে হয়। গ্রামটি অতি সামান্য। নিকটে একটি নীলকুঠি আছে, তাই কুঠির সাহেব অনেক জোগাড় করিয়া এই নূতন পোস্টআপিস স্থাপন করাইয়াছে।
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "পোস্টমাস্টার" গল্পে পোস্টঅফিসটি উলাপুর গ্রামে অবস্থিত।
184
"পোস্টমাস্টার" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি ছোট গল্প। গল্পটির থেকে একটি অংশ নীচে উদ্ধৃত করা হল। পোস্টমাস্টারের বেতন অতি সামান্য। নিজে রাঁধিয়া খাইতে হয় এবং গ্রামের একটি পিতৃমাতৃহীন অনাথা বালিকা তাঁহার কাজকর্ম করিয়া দেয়, চারিটি-চারিটি খাইতে পায়। মেয়েটির নাম রতন। বয়স বারো-তেরো। বিবাহের বিশেষ সম্ভাবনা দেখা যায় না। উপরোক্ত অনুচ্ছেদ অনুযায়ী: - রতনের বয়স কত? - রতন কি পোস্টমাস্টারের জন্য রান্না করে দেয়?
প্রদত্ত অনুচ্ছেদ অনুযায়ী: - রতনের বয়স প্রায় ১২-১৩ বছর। - পোস্টমাস্টার নিজে রান্না করেন। রতন তার অন্যান্য কাজকর্ম করে দেয়।
185
"পোস্টমাস্টার" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি ছোট গল্প। গল্পটির থেকে একটি অংশ নীচে উদ্ধৃত করা হল। পোস্টামাস্টার একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া ডাকিলেন, "রতন"। রতন তখন পেয়ারাতলায় পা ছড়াইয়া দিয়া কাঁচা পেয়ারা খাইতেছিল; প্রভুর কন্ঠস্বর শুনিয়া অবিলম্বে ছুটিয়া আসিল— হাঁপাইতে হাঁপাইতে বলিল, "দাদাবাবু, ডাকছ?" পোস্টমাস্টার বলিলেন, "তোকে আমি একটু একটু করে পড়তে শেখাব।" বলিয়া সমস্ত দুপুরবেলা তাহাকে লইয়া "স্বরে অ" "স্বরে আ" করিলেন। এবং এইরূপে অল্পদিনেই যুক্ত-অক্ষর উত্তীর্ণ হইলেন। উপরোক্ত অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রতন কি লেখাপড়া জানত?
"পোস্টমাস্টার" গল্পে রতন লেখাপড়া জানত না। পোস্টমাস্টার তাকে লেখাপড়া শেখান।
186
"পোস্টমাস্টার" রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা একটি ছোট গল্প। গল্পটির থেকে একটি অংশ নীচে উদ্ধৃত করা হল। পোস্টামাস্টার একটা দীর্ঘনিশ্বাস ফেলিয়া ডাকিলেন, "রতন"। রতন তখন পেয়ারাতলায় পা ছড়াইয়া দিয়া কাঁচা পেয়ারা খাইতেছিল; প্রভুর কন্ঠস্বর শুনিয়া অবিলম্বে ছুটিয়া আসিল— হাঁপাইতে হাঁপাইতে বলিল, "দাদাবাবু, ডাকছ?" পোস্টমাস্টার বলিলেন, "তোকে আমি একটু একটু করে পড়তে শেখাব।" বলিয়া সমস্ত দুপুরবেলা তাহাকে লইয়া "স্বরে অ" "স্বরে আ" করিলেন। এবং এইরূপে অল্পদিনেই যুক্ত-অক্ষর উত্তীর্ণ হইলেন। উপরোক্ত অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, রতন কি করছিল?
রতন পেয়ারাতলায় পা ছড়িয়ে বসে কাঁচা পেয়ারা খাচ্ছিল।
187
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "ক্ষুধিত পাষাণ" গল্পের একটি অংশ নীচে উদ্ধৃত করা হল। আমি এবং আমার আত্মীয় পূজার ছুটিতে দেশভ্রমণ সারিয়া কলিকাতায় ফিরিয়া আসিতেছিলাম, এমন সময় রেলগাড়িতে বাবুটির সঙ্গে দেখা হয়। তাঁহার বেশভূষা দেখিয়া প্রথমটা তাঁহাকে পশ্চিমদেশীয় মুসলমান বলিয়া ভ্রম হইয়াছিল। তাঁহার কথাবার্তা শুনিয়া আরো ধাঁধা লাগিয়া যায়। পৃথিবীর সকল বিষয়েই এমন করিয়া আলাপ করিতে লাগিলেন, যেন তাঁহার সহিত প্রথম পরামর্শ করিয়া বিশ্ববিধাতা সকল কাজ করিয়া থাকেন। বিশ্বসংসারের ভিতরে ভিতরে যে এমন-সকল অশ্রুতপূর্ব নিগূঢ় ঘটনা ঘটিতেছিল, রুশিয়ানরা যে এতদূর অগ্রসর হইয়াছে, ইংরাজদের যে এমন-সকল গোপন মতলব আছে, দেশীয় রাজাদের মধ্যে যে একটা খিচুড়ি পাকিয়া উঠিয়াছে, এ-সমস্ত কিছুই না জানিয়া আমরা সম্পূর্ণ নিশ্চিন্ত হইয়া ছিলাম। আমাদের নবপরিচিত আলাপটি ঈষৎ হাসিয়া কহিলেন: There happen more things in heaven and earth, Horatio, than are reported in your newspapers। প্রশ্ন: বাবুটির সঙ্গে কোথায় আলাপ হয়?
উত্তর: গল্পানুসারে, বাবুটির সঙ্গে পূজার ছুটি কাটিয়ে ট্রেনে করে কলকাতায় ফেরার সময় দেখা হয়।
188
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "ক্ষুধিত পাষাণ" গল্পের একটি অংশ নীচে উদ্ধৃত করা হল। গাড়িটি আসিয়া জংশনে থামিলে আমরা দ্বিতীয় গাড়ির অপেক্ষায় ওয়েটিংরুমে সমবেত হইলাম। তখন রাত্রি সাড়ে দশটা। পথের মধ্যে একটা কী ব্যাঘাত হওয়াতে গাড়ি অনেক বিলম্বে আসিবে শুনিলাম। আমি ইতিমধ্যে টেবিলের উপর বিছানা পাতিয়া ঘুমাইব স্থির করিয়াছি, এমন সময়ে সেই অসামান্য ব্যক্তিটি নিম্নলিখিত গল্প ফাঁদিয়া বসিলেন। সে রাত্রে আমার আর ঘুম হইল না। প্রশ্ন: কটা নাগাদ সবাই ওয়েটিং রুমে সমবেত হয়?
উত্তর: রাত সাড়ে দশটা নাগাদ।
189
"ক্ষুধিত পাষাণ" গল্পের একটি অংশ নীচে উদ্ধৃত করা হল। রাজ্যচালনা সম্বন্ধে দুই একটা বিষয়ে মতান্তর হওয়াতে আমি জুনাগড়ের কর্ম ছাড়িয়া দিয়া হাইদ্রাবাদে যখন নিজাম-সরকারে প্রবেশ করিলাম তখন আমাকে অল্পবয়স্ক ও মজবুত লোক দেখিয়া প্রথমে বরীচে তুলার মাশুল-আদায়ে নিযুক্ত করিয়া দিল। প্রশ্ন: ১) বক্তা প্রথমে কোথায় কাজ করতেন? ২) বক্তা বর্তমানে কি কাজ করেন?
উত্তর: "ক্ষুধিত পাষাণ" গল্পের উদ্ধৃত অংশ অনুসারে: ১) বক্তা পূর্বে জুনাগড়ে কাজ করতেন। ২) বর্তমানে বক্তা হাইদ্রাবাদের অন্তর্গত বরীচে তুলার মাশুল-আদায়ের কাজ করেন।
190
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "ক্ষুধিত পাষাণ" গল্পের একটি অংশ নীচে দেওয়া হল: বরীচ জায়গাটি বড়ো রমণীয়। নির্জন পাহাড়ের নীচে বড়ো বড়ো বনের ভিতর দিয়া শুস্তা নদীটি (সংস্কৃত স্বচ্ছতোয়ার অপভ্রংশ) উপলমুখরিত পথে নিপুণা নর্তকীর মতো পদে পদে বাঁকিয়া বাঁকিয়া দ্রুত নৃত্যে চলিয়া গিয়াছে। ঠিক সেই নদীর ধারেই পাথর-বাঁধানো দেড়-শত-সোপান-ময় অত্যুচ্চ ঘাটের উপরে একটি শ্বেতপ্রস্তরের প্রাসাদ শৈলপদমূলে একাকী দাঁড়াইয়া আছে-- নিকটে কোথাও লোকালয় নাই। বরীচের তুলার হাট এবং গ্রাম এখান হইতে দূরে। প্রশ্ন: বরীচে কোন নদী বয়ে চলেছে?
উত্তর: শুস্তা নদী।
191
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "ক্ষুধিত পাষাণ" গল্পের একটি অংশ নীচে দেওয়া হল: বরীচ জায়গাটি বড়ো রমণীয়। নির্জন পাহাড়ের নীচে বড়ো বড়ো বনের ভিতর দিয়া শুস্তা নদীটি (সংস্কৃত স্বচ্ছতোয়ার অপভ্রংশ) উপলমুখরিত পথে নিপুণা নর্তকীর মতো পদে পদে বাঁকিয়া বাঁকিয়া দ্রুত নৃত্যে চলিয়া গিয়াছে। ঠিক সেই নদীর ধারেই পাথর-বাঁধানো দেড়-শত-সোপান-ময় অত্যুচ্চ ঘাটের উপরে একটি শ্বেতপ্রস্তরের প্রাসাদ শৈলপদমূলে একাকী দাঁড়াইয়া আছে— নিকটে কোথাও লোকালয় নাই। বরীচের তুলার হাট এবং গ্রাম এখান হইতে দূরে। প্রশ্ন: শুস্তা নদীর ঘাটের সিঁড়িতে কতগুলো ধাপ আছে?
উত্তর: শুস্তা নদীর ঘাটের সিঁড়িতে ১৫০টা ধাপ আছে।
192
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের "ক্ষুধিত পাষাণ" গল্পের একটি অংশ নীচে দেওয়া হল: প্রায় আড়াই শত বৎসর পূর্বে দ্বিতীয় শা-মামুদ ভোগবিলাসের জন্য প্রাসাদটি এই নির্জন স্থানে নির্মাণ করিয়াছিলেন। তখন হইতে স্নানশালার ফোয়ারার মুখ হইতে গোলাপগন্ধী জলধারা উৎক্ষিপ্ত হইতে থাকিত এবং সেই শীকরশীতল নিভৃত গৃহের মধ্যে মর্মরখচিত স্নিগ্ধ শিলাসনে বসিয়া কোমল নগ্ন পদপল্লব জলাশয়ের নির্মল জলরাশির মধ্যে প্রসারিত করিয়া তরুণী পারসিক রমণীগণ স্নানের পূর্বে কেশ মুক্ত করিয়া দিয়া সেতার-কোলে দ্রাক্ষাবনের গজল গান করিত। প্রশ্ন: প্রাসাদটি কে নির্মাণ করেছিলেন?
উত্তর: প্রাসাদটি দ্বিতীয় শা-মামুদ নির্মাণ করেছিলেন।
193
"ক্ষুধিত পাষাণ" গল্প থেকে একটি অংশ নীচে উদ্ধৃত করা হল: তখন গ্রীষ্মকালের আরম্ভে বাজার নরম; আমার হাতে কোনো কাজ ছিল না। সূর্যাস্তের কিছু পূর্বে আমি সেই নদীতীরে ঘাটের নিম্নতলে একটা আরাম-কেদারা লইয়া বসিয়াছি। তখন শুস্তানদী শীর্ণ হইয়া আসিয়াছে; ও পারে অনেকখানি বালুতট অপরাহ্নের আভায় রঙিন হইয়া উঠিয়াছে; এ পারে ঘাটের সোপানমূলে স্বচ্ছ অগভীর জলের তলে নুড়িগুলি ঝিক্‌ ঝিক্‌ করিতেছে। সেদিন কোথাও বাতাস ছিল না। নিকটের পাহাড়ে বনতুলসী পুদিনা ও মৌরির জঙ্গল হইতে একটা ঘন সুগন্ধ উঠিয়া স্থির আকাশকে ভারাক্রান্ত করিয়া রাখিয়াছিল। প্রশ্ন: পাহাড়ের জঙ্গলের কয়েকটি গাছের নাম বল।
উত্তর: উদ্ধৃত অংশ অনুযায়ী, পাহাড়ে জঙ্গলে বনতুলসী, পুদিনা ও মৌরি গাছের নাম উল্লেখ করা হয়েছে।
194
রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের লেখা "ডিটেকটিভ" গল্প থেকে একটি অংশ নীচে উদ্ধৃত করা হল: অনুসন্ধান করিয়া তাহার বাসা জানিলাম। মন্মথ তাহার নাম, সে কলেজের ছাত্র, পরীক্ষা ফেল করিয়া গ্রীষ্মাবকাশে ঘুরিয়া ঘুরিয়া বেড়াইতেছে, তাহার বাসার সহবাসী ছাত্রগণ সকলেই আপন আপন বাড়ি চলিয়া গেছে। দীর্ঘ অবকাশকালে সকল ছাত্রই বাসা ছাড়িয়া পালায়, এই লোকটিকে কোন্‌ দুষ্টগ্রহ ছুটি দিতেছে না সেটা বাহির করিতে কৃতসংকল্প হইলাম। প্রশ্ন: মন্মথ কি করে?
উত্তর: মন্মথ কলেজের ছাত্র।
195
"রানার ছুটেছে তাই ঝুম ঝুম্ ঘণ্টা বাজছে রাতে" উপরোক্ত পংক্তিটি সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা "রানার" কবিতা থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। এখানে রানার বলতে কবি কি বুঝিয়েছেন?
"রানার"—এটি ইংরেজি শব্দ "runner" এর বাংলা প্রতিবর্ণীকরণ, যার অর্থ একজন যিনি দৌড়ান। ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষে, যখন গাড়ি, রেল ও অন্যান্য আধুনিক যানবাহনের চলাচল অতিসীমিত ছিল, ডাকহরকরারা চিঠিপত্র বস্তায় ভরে পিঠে করে এক গ্রাম থেকে অন্য এক দূরের গ্রামে ছুটে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসত। সেইজন্য কবি ডাকহরকরাদের রানার বলে আখ্যায়িত করেছেন।
196
"রানার ছুটেছে তাই ঝুম ঝুম্ ঘণ্টা বাজছে রাতে" উপরোক্ত পংক্তিটি সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা "রানার" কবিতা থেকে উদ্ধৃত করা হয়েছে। এখানে রাতে ঘন্টা বাজার কথা কেন বলা হয়েছে?
ব্রিটিশ শাসিত ভারতবর্ষে, যখন আধুনিক যানচলাচল ও যোগাযোগ মাধ্যমের বিস্তার ঘটেনি, ডাকহরকরা—অর্থাৎ "রানার"—পিঠে একটা বস্তায় চিঠিপত্র ভরে এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে ছুটে গিয়ে পৌঁছে দিয়ে আসত। যেহেতু দিনের বেলায় সব চিঠিপত্র তাদের গন্তব্যে পৌঁছে দিতে হবে, সেহেতু রানারের যাত্রা শুরু হত রাত্রিবেলায়, সে সারারাত ছুটে দূরের গ্রামে পৌঁছাত। তৎকালীন সময়ে রাত্রিকালীন যাত্রা সংকটপূর্ণ ছিল—একদিকে জঙ্গলের নিশাচর ও পশু, অন্যদিকে ডাকাত ও দস্যুদের ভয়। সেইজন্য রানার সঙ্গে একটা লাঠি বা বল্লম নিয়ে দৌড়াত। সেই বল্লমে ঘন্টা বাঁধা থাকত। আর সেই ঘন্টা বাঁধা বল্লম নিয়ে দৌড়ানোর ফলে রাতের অন্ধকারে ঝুম ঝুম্ আওয়াজ শোনা যেত।
197
সুকান্ত ভট্টাচার্যের "রানার" কবিতার প্রথম স্তবকটি নিচে দেওয়া হল। একটি সংক্ষিপ্ত বিশ্লেষণ লেখ। রানার ছুটেছে তাই ঝুম্‌ঝুম্ ঘন্টা বাজছে রাতে রানার চলেছে খবরের বোঝা হাতে, রানার চলেছে, রানার! রাত্রির পথে পথে চলে কোনো নিষেধ জানে না মানার। দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছোটে রানার— কাজ নিয়েছে সে নতুন খবর আনার।
রানার কবিতায় কবি সুকান্ত ভট্টাচার্য রমজীবী মানুষের জয়গান গেয়েছেন। রানার বা ডাক হরকরা মানুষের কাছে চিঠি পৌঁছে দেয়। দিগন্ত থেকে দিগন্তে ছুটে, এক গ্রাম থেকে অন্য গ্রামে গিয়ে চিঠিপত্র গন্তব্যস্থলে, নিজ নিজ ঠিকানায় পৌঁছে দেয়। আর সেই জন্য রানারের যাত্রা শুরু হয় রাত্রি বেলায়। পিঠে এক বস্তা বোঝাই করা চিঠি, হাতে ঘন্টা বাঁধা বল্লম, আর সেই গতিমান রানারের ঘন্টার আওয়াজ রাত্রি ভেদ করে এগিয়ে চলেছে। রানার কোন নিষেধ মানেনা, সে এই অস্বাভাবিক সময়েও কাজ করে চলে। তার কাজ একটাই—মানুষের কাছে সুখ-দুঃখের, হাসি-কান্নার, প্রেম-বিরহের খবর পৌঁছে দেওয়া। সংবাদবাহক হিসেবে তার দায়িত্ব গুরুত্বপূর্ণ এবং রানার সেই কর্ম অতি গুরুত্ব সহকারে পালন করে।
198
রানার! রানার! জানা-অজানার বোঝা আজ তার কাঁধে, বোঝাই জাহাজ রানার চলেছে চিঠি আর সংবাদে; রানার চলেছে, বুঝি ভোর হয় হয়, আরো জোরে, আরো জোরে হে রানার দু্র্বার দুর্জয়।
রানার জানা-অজানার বহু সংবাদ কাঁধে নিয়ে ছুটে চলে। এই চিঠিপত্র তার চেনা-অচেনা, পরিচিত-অপরিচিত বহু লোকের লেখা, বহু লোকের উদ্দেশ্যে লেখা। কোন চিঠিতে হয়ত আনন্দের সংবাদ, কোথাও বা দুঃখের, কোথাও হয়ত কেবলি প্রশ্ন। পরিচিতির সুবাদে হয়ত সামান্য কিছু সংবাদ রানার জানে, কিন্তু মূলত প্রায় অন্য সব চিঠির বিষয়বস্তু রানার অজানা। এই সমস্ত চিঠিপত্র ও সংবাদ যখন রানার পিঠে বস্তা ভরে নিয়ে চলে, দেখে মনে হয় যেন একটা মালবাহী জাহাজ জিনিসপত্র বোঝাই করে এগিয়ে চলেছে। সেই রানারের মনে আশঙ্কা একটাই—এই বুঝি রাত শেষ হয়ে ভোর হল! ভোরের আলো ফোঁটার আগে তাকে গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে হবে। তাই সে আর জোরে ছুটতে থাকে, দুর্দম, দুর্বার বেগে, অপ্রতিরোধ্য গতিতে।
199
"রানার" কবিতা থেকে একটি অংশ নিচে উদ্ধৃত করা হল। অংশটি ব্যাখ্যা কর। তার জীবনের স্বপ্নের মতো পিছে সরে যায় বন, আরো পথ, আরো পথ — বুঝি লাল হয় ও পূর্ব কোণ। অবাক রাতের তারারা, আকাশে মিট্‌মিট্ করে চায়; কেমন করে এ রানার সবেগে হরিণের মতো যায় ! কত গ্রাম, কত পথ যায় স’রে স’রে— শহরে রানার যাবেই পৌঁছে ভোরে; হাতে লন্ঠন করে ঠন্‌ঠন্, জোনাকিরা দেয় আলো মাভৈঃ রানার! এখনো রাতের কালো।
রানার একজন সামান্য শ্রমজীবী মানুষ। তার কাজ রাতের অন্ধকারে এক বস্তা চিঠি বয়ে দূরদূরান্তরে পৌঁছে দেওয়া। এ কাজে পরিশ্রম যেমন বেশি, বেতন তেমনই কম। অতএব রানারের জীবনের বহু স্বপ্ন অসুম্পূর্ণ থাকে, ধীরে ধীরে সম্ভাব্যের তালিকা থেকে সরে বাতিলের দলে স্থান পায়। যখন সে দুর্বার গতিতে ছুটে চলে, পথের ধারের বন-জঙ্গলও যেন ঠিক একইভাবে পিছনে সরে যায়। রানার ছুটে চলেছে, সামনে এখনও অনেকটা পথ বাকি। প্রত্যুষের ছোঁয়ায় বুঝি আকাশের পূর্বকোণ লাল হয়ে এল। শেষ রাতের আকাশের তারারা তখনও মিট্‌মিট্ করে জ্বলছে। রানারের দুরন্ত নৈশঅভিযানের, সংগ্রামের একমাত্র সাক্ষী আকাশের তারারা। সেই নক্ষত্রপুঞ্জ যেন অবাকদৃষ্টিতে তাকিয়ে দেখছে রানার কেমন ভাবে হরিণের মতন নিঃশব্দ অথচ দ্রুত গতিতে দৌড়ে চলেছে। রানার কতক্ষণ ধরে ছুটে চলেছে তার খেয়াল নেই। কিন্তু এক এক করে বহু গ্রাম, বন, পথ-প্রান্তর সে পিছনে ফেলে এগিয়ে চলেছে। লন্ঠন আর জোনাকির মৃদু আলো তার চলার অন্ধকার পথ আলোকিত করে, আর সেই পথ ধরেই রানার শহরে ভোরের আগে পৌঁছে যাবে—নিশি প্রকৃতি ও নক্ষত্রপুঞ্জের ঝলকানিতে যেন একরূপ আস্থা প্রকাশ প্রকাশ পায়, যেন তারা রানারকে উৎসাহ প্রদান করে, তাকে নির্ভয়ে এগিয়ে যেতে বলে।
200
"রানার" কবিতা থেকে একটি অংশ নিচে উদ্ধৃত করা হল। উদ্ধৃত অংশটি সংক্ষেপে ব্যাখ্যা কর। এমনি ক’রেই জীবনের বহু বছরকে পিছু ফেলে, পৃথিবীর বোঝা ক্ষুধিত রানার পৌঁছে দিয়েছে ‘মেলে’। ক্লান্তশ্বাস ছুঁয়েছে আকাশ, মাটি ভিজে গেছে ঘামে জীবনের সব রাত্রিকে ওরা কিনেছে অল্প দামে। অনেক দুঃখে, বহু বেদনায়, অভিমানে, অনুরাগে, ঘরে তার প্রিয়া একা শয্যায় বিনিদ্র রাত জাগে।
কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের রানার কবিতায়, বিশেষ করে উদ্ধৃত অংশে, সাধারণ শ্রমজীবী মানুষের দৈনন্দিন সংগ্রামের এক প্রাণবন্ত বিবরণ পাওয়া যায়। এক মালবাহী জাহাজের মতন বস্তাভর্তি চিঠিপত্র নিয়ে রানার রাতের অন্ধকার ভেদ করে ছুটে চলে, যাতে ভোরের আগে সেই সব সংবাদ শহরে পৌঁছে যায়। বছরের পর বছর ধরে সে এই একই কাজ করে চলেছে। তার এই নিত্য সংগ্রামের ফলস্বরূপ তার জীবনের বহু স্বপ্ন, আশা, চাওয়া-পাওয়া উপেক্ষিত হয়েছে, হারিয়ে গেছে। তার ক্লান্তশ্বাস ও দীর্ঘশ্বাসের প্রতিধ্বনি আকাশ অব্দি পৌঁছে গেছে, তার ক্লান্ত শরীরের অশেষ ঘামে মাটি ভিজে গেছে। কিন্তু তার এই নিত্য অক্লান্ত পরিশ্রমের, তার এই নির্ভরশীলতা ও গুরুদায়িত্ব পালনের মূল্য অতিসামান্য। সেই মাত্র কয়েকটা পয়সার জন্য রানার যেন তার জীবনের সব স্বপ্ন বেচে দিয়েছে। সেই সামান্য পারিশ্রমিকে অর্থসংস্থান ও জীবনযাপন করা দুরূহ। তাই রানার যখন রাতের অন্ধকারে পেটে ক্ষুদা নিয়ে ছুটে চলেছে, তার ঘরে তার প্রিয়া একাকী বেদনায়, অভিমানে ও অপেক্ষায় নির্ঘুম রাত পার করে।