text
stringlengths
208
626k
metadata
stringclasses
1 value
বিডিটুডে.নেট: ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 11 May 2016, Wednesday ‘নাস্তিকতা আল্লাহ আছে এই সত্য অস্বীকার করে, যে অস্বীকৃতির মধ্য দিয়ে মানুষই শুধু আছে সেই সত্য জাহির করা হয়। কিন্তু কমিউনিজমের জন্য এ ধরনের ঘোরাপথের দরকার পড়ে না।’ (কার্ল মার্কস) ‘যে নৈরাজ্যবাদী খেয়ে না খেয়ে আল্লাহখোদার বিরুদ্ধে যুদ্ধের ওয়াজ করে বেড়ায় সে আসলে মোল্লা-মৌলবি-পুরোহিত আর বুর্জোয়াদের স্বার্থই রক্ষা করে।’ (ভ্লাদিমির ইলিচ লেনিন) সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতি থেকে ধর্মকে কাঁচি দিয়ে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না রাজনীতি সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। ধর্ম থেকেও নয়। ধর্ম নিয়ে তর্কবিতর্কে না গিয়ে অতি প্রাথমিক অনেক বিষয় আমরা কাণ্ডজ্ঞানেই বুঝতে পারি। যেমন, আমরা চাই বা না চাই ধর্মকে সমাজ ও সংস্কৃতি থেকে যান্ত্রিকভাবে আলাদা করতে পারি না। মানুষ কী নীতি মেনে চলবে, নৈতিকতার কোন মানদণ্ড দিয়ে তার নিজের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন পরিচালনা করবে তা নির্ধারণ বা নির্ণয় করবার ক্ষেত্রে একসময় শুধু ধর্মের নির্দেশই কাজ করেছে। এখনও বিপুলসংখ্যক ধর্মভীরু মানুষের কাছে ধর্মের নির্দেশই শিরোধার্য। ধর্ম শুধু জীবন ও জগতের ব্যাখ্যা কিম্বা নৈতিক বিধিবিধান নির্ণয় করেছে তা নয়, তাকে বলবৎ করবার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছে। আধুনিক সমাজ ও আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে ধর্মের ভূমিকাও বদলে গিয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক ও ঐতিহাসিক বাস্তবতায় সেটা কিভাবে ঘটেছে সেটা বোঝা এবং সেই বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ম ও রাষ্ট্রের প্রতি নিপীড়িতের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে, সেটা নির্ধারণ করাই বাস্তবোচিত কাজ। বিমূর্তভাবে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার অর্থ নির্বিচারে আধুনিক কেন্দ্রীভূত ক্ষমতাসম্পন্ন রাষ্ট্রের পক্ষে দাঁড়ানো। কিন্তু তথাকথিত আধুনিক রাষ্ট্রও জীবনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র থেকে ধর্মের বিধান বিলোপ করতে পারেনি। বাংলাদেশের সংবিধান ‘রাষ্ট্র ও গণজীবনের সর্বস্তরে নারী-পুরুষের সমান অধিকার’ লাভ করবার কথা বললেও পারিবারিক জীবনে নাগরিকদের যার যার ধর্মের নির্দেশ পালন করতে বলেছে (গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধানের ২৮(২) অনুচ্ছেদ)। ঐতিহাসিক বাস্তবতা ও সমাজের অবস্থাভেদে ধর্মই আইনদাতার ভূমিকা পালন করেছে এবং শাসনের হাতিয়ার হয়েছে। ধার্মিক না হতে পারি; কিন্তু সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে ধর্মের সামাজিক অভ্যাস, চর্চা বা শিক্ষা আমাদের নীতিনৈতিকতার জগৎ গঠনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রাখে। যেহেতু ধর্মের সাংস্কৃতিক ভূমিকা আছে, অতএব সরাসরি না হলেও ধর্মের প্রভাব, প্রণোদনা বা প্রেরণা ব্যক্তির জীবনে কাজ করে। ঘোর নাস্তিকও সমাজের বাইরে বাস করেন না। নিজেদের সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ দাবি করলেও ধর্ম সমাজে ও সংস্কৃতিতে যে প্রভাব বা আধিপত্য বিস্তার করে থাকে, তার প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষ প্রভাব থেকে কেউই মুক্ত থাকে না। ইত্যাদি নানান কারণে ধর্মের সঙ্গে ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রের সম্পর্ককে আমরা যত সরল মনে করি, মোটেও তা অত সরল নয়। রাজনীতি সমাজ, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। ধর্ম থেকেও নয়। ধর্ম নিয়ে তর্কবিতর্কে না গিয়ে অতি প্রাথমিক অনেক বিষয় আমরা কাণ্ডজ্ঞানেই বুঝতে পারি। যেমন, আমরা চাই বা না চাই ধর্মকে সমাজ ও সংস্কৃতি থেকে যান্ত্রিকভাবে আলাদা করতে পারি না। মানুষ কী নীতি মেনে চলবে, নৈতিকতার কোন মানদণ্ড দিয়ে তার নিজের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবন পরিচালনা করবে তা নির্ধারণ বা নির্ণয় করবার ক্ষেত্রে একসময় শুধু ধর্মের নির্দেশই কাজ করেছে। এখনও বিপুলসংখ্যক ধর্মভীরু মানুষের কাছে ধর্মের নির্দেশই শিরোধার্য। ধর্ম শুধু জীবন ও জগতের ব্যাখ্যা কিম্বা নৈতিক বিধিবিধান নির্ণয় করেছে তা নয়, তাকে বলবৎ করবার ক্ষেত্রেও ভূমিকা রেখেছে। আধুনিক সমাজ ও আধুনিক রাষ্ট্র গড়ে ওঠার মধ্য দিয়ে ধর্মের ভূমিকাও বদলে গিয়েছে। বিভিন্ন সামাজিক ও ঐতিহাসিক বাস্তবতায় সেটা কিভাবে ঘটেছে সেটা বোঝা এবং সেই বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে ধর্ম ও রাষ্ট্রের প্রতি নিপীড়িতের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে সেটা নির্ধারণ করাই বাস্তবোচিত কাজ। বিমূর্তভাবে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করার অর্থ নির্বিচারে কোনো পর্যালোচনা ছাড়া পাশ্চাত্যের ইতিহাস এবং তার পরিণতি অনুকরণ করা। এর দুটো গুরুত্বপূর্ণ দিক আছে। প্রথমত পাশ্চাত্য চিন্তাচেতনা, সংস্কৃতি ও সভ্যতার গোড়ায় রয়েছে গ্রিক-খ্রিষ্টীয় চিন্তা। এই পরিমণ্ডলেই পাশ্চাত্যে পুঁজিতন্ত্রের উদ্ভব ও বিকাশ ঘটেছে যাকে আমরা ‘আধুনিকতা’ বলে থাকি। তাহলে প্রথমেই এই গ্রিক-খ্রিষ্টীয় ‘আধুনিকতা’র একটা পর্যালোচনা দরকার। পাশ্চাত্যে খ্রিষ্টীয় ধর্মের যে রূপ ও ইতিহাস আমরা দেখি, ধরে নেওয়া হয় সেটাই আর সকল ধর্মের রূপ বা চরিত্র। অন্যান্য জনগোষ্ঠির ইতিহাসও বুঝি পাশ্চাত্য ইতিহাস থেকে আলাদা কিছু নয়। অথচ দরকার সুনির্দিষ্টভাবে কেন পাশ্চাত্যে গির্জা ও রাষ্ট্রের ফারাক- অর্থাৎ ধর্ম ও আধুনিক রাষ্ট্রের পার্থক্য ঘটল সেই ইতিহাস পর্যালোচনা করা। এর সঙ্গে ‘পাবলিক’ ও ‘প্রাইভেট’-এর বিভাজন ঘটে যাওয়ার দিকটিও জড়িত। এই সকল দিক বিচার না করে তথাকথিত ‘আধুনিকতা’ অর্থাৎ গ্রিক-খ্রিষ্টীয় ভিত্তির ওপর গড়ে ওঠা পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং তার পরিণতি হিসাবে আধুনিক রাষ্ট্রকে নির্বিচারে মেনে চলি, তখন তা বাংলাদেশের ঐতিহাসিক বাস্তবতায় ধর্ম ও রাষ্ট্রের প্রতি নিপীড়িতের রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি কী হবে সেটা আমরা আর বুঝতে পারি না। আধুনিকতাকে মেনে চলি, আধুনিক রাষ্ট্রের পক্ষে দাঁড়াই, গণমানুষের ধর্ম ও নানাবিধ সংবেদনশীল ক্ষেত্রগুলোর প্রতি প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে উঠি। ধর্ম, ধর্মীয় গ্রন্থের ব্যাখ্যা এবং ধর্মতত্ত্বের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে প্রতিটি ধর্মের মধ্যেই তর্কবিতর্ক আছে। সেই তর্কবিতর্ক ধর্মের অভ্যন্তরীণ বিতর্ক। কোনো ধর্মেরই একাট্টা এক রকমের সর্বজনমান্য কোনো ব্যাখ্যা নেই। সেটা অসম্ভবও বটে। ইসলামও একাট্টা এক রকম নয়। শিয়া ও সুন্নির পার্থক্য আছে, শরিয়তপন্থী ও মারেফাতপন্থীদের ঝগড়া নতুন কিছু নয়। এ ধরনের ঝগড়া অহিংস ছিল না, আবার ধর্ম তার অভ্যন্তরীণ লড়াই সংগ্রামের মধ্য দিয়ে নিজের ঐতিহাসিক তাগিদে নিজের সংস্কারও নিজে করেছে। অর্থাৎ ধর্ম কোনো নিশ্চল অনৈতিহাসিক ব্যাপার নয়। তারও বিবর্তন ঘটেছে। কিন্তু ধর্মমাত্রই প্রতিক্রিয়াশীল এবং তার সঙ্গে মোকাবিলার পথ একাট্টা ধর্মের বিরোধিতা- এই বিকৃত ধারণা আমরা বাংলাদেশে যেভাবে দেখি, পৃথিবীর অন্য কোথাও দেখা যায় কি না সন্দেহ। আর কোনো দেশে কমিউনিস্ট নাম নিয়ে রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার বন্ধ করার জন্য কমিউনিস্টরা হরতাল করেছেন তার নজির নাই। একাট্টা ইসলামবিরোধিতা জর্জ বুশের রাজনীতি কিন্তু আমরা আরো একটি কারণে উদ্বিগ্ন না হয়ে পারছি না। একাট্টা সব ধরনের ইসলামি রাজনীতি নিষিদ্ধ করার দাবি বিশেষভাবে জর্জ বুশের নীতিকেই মনে করিয়ে দেয়। জর্জ টাউন বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক জন এস্পিসিতোর কথাই ধরি। তার কথা হচ্ছে, ইসলামের রাজনৈতিক ব্যবহার বা ‘রাজনৈতিক ইসলাম’কে জিমি কার্টারের সময় থেকে সব মার্কিন প্রেসিডেন্টকেই মোকাবিলা করতে হয়েছে। তবে ৯/১১’র ঘটনার পরে জর্জ বুশ যে চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হয়েছিলেন, তার সঙ্গে তুলনা চলে না। সে সময় তিনি ও তার নীতিনির্ধারকরা রাজনৈতিক ইসলামের মধ্যেও যে চরমপন্থী এবং মধ্যপন্থীর ভেদ আছেন সেটা বুঝতে চাইতেন না, বোঝার ক্ষমতাও ছিল না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছিল ইসলামের সব কিসিমের রাজনৈতিক প্রকাশ ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে। তারা রাজনৈতিক ইসলামকে বিশ্বব্যাপী হুমকি গণ্য করেছিল, ঠিক যেমন সিনেটর জোসেফ ম্যাকার্থির আমলে কমিউনিজমকেও গণ্য করা হয়েছিল দুনিয়ার হুমকি হিসেবে। কিন্তু কমিউনিজম মোকাবিলার সময়েও শুরুর অনভিজ্ঞতা, সবকিছুকে এক থোকে ভাববার চর্চা ও আতঙ্ক থেকে আস্তে আস্তে নীতিনির্ধারকরা সরে আসে। তবে ওয়ার অন টেররের শুরুতে প্রেসিডেন্ট বুশ রাষ্ট্র থেকে ধর্ম সরানোর কথা বলতেন। প্যালেস্টাইনের নির্বাচনে হামাসের জয়, ইরাকে শিয়াদের রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে আবির্ভাব এবং মিসরসহ মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন দেশে মুসলিম ব্রাদারহুডের জনপ্রিয়তা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নীতি পরিবর্তনের ক্ষেত্রে ভূমিকা রেখেছে। চরমপন্থী রাজনৈতিক ইসলাম আর মধ্যপন্থী অহিংস ইসলামের প্রতি মার্কিন সাম্রাজ্যবাদী নীতি এখন আর এক নয় (দেখুন, It’s The Policy Stupid : Political Islam and US Foreign Policy by John L. Esposito . Georgetown University) মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের এই নীতির পরিবর্তনের প্রভাব বাংলাদেশেও পড়ার কথা। বলা বাহুল্য, ৯/১১’র পরপরই বাংলাদেশে ক্ষমতাসীন বিএনপি-জামায়াতকে যে চোখে দেখা হতো, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সেই চোখে এখনও দেখে কি না নিশ্চিত করে বলা মুশকিল; কিন্তু না দেখাই স্বাভাবিক। বিশেষত শেখ হাসিনা যেমন বলেন, বাংলাদেশের সকল প্রকার ‘জঙ্গি’ ইসলামের হোতা বিএনপি-জামায়াত, অতএব তাদের ক্ষমতা থেকে দূরে রাখাই শ্রেয় কিংবা শেখ হাসিনার সঙ্গে মৈত্রীই বাংলাদেশে মার্কিন স্বার্থ রক্ষা করার একমাত্র উপায়- এ ধরনের চিন্তা ওয়াশিংটনের এখন থাকার কথা নয়। বাস্তব পরিস্থিতির বদল ঘটলে সমাজে শ্রেণীর সঙ্গে শ্রেণীর সম্পর্ক এবং শক্তির ভারসাম্যেও রূপান্তর ঘটে। বাংলাদেশও ব্যতিক্রম নয়। এ কথাগুলো তোলার কারণ হচ্ছে, রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা যে মূলত জর্জ বুশের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের নীতিরই প্রতিধ্বনি, সেই কথাটা মনে করিয়ে দেয়া। তাহলে ধর্মের রাজনৈতিক ব্যবহার বন্ধ করা বা ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করা কমিউনিস্টদের দাবি হতে পারে না। তারা বলছেন, সকল ‘সাম্প্রদায়িক’ দল নিষিদ্ধ করতে হবে। কিন্তু ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল আর সাম্প্রদায়িকতা যে এক নয়, সেটা আমি নিজের জবানে না বলে অগ্রজ বদরুদ্দীন উমরের শরণাপন্ন হব। বদরুদ্দীন উমর বলছেন, ‘ধর্মের যেকোনো সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক ব্যবহারকেই সাম্প্রদায়িক আখ্যা দেয়া এক মহাতাত্ত্বিক ও বাস্তব ভ্রান্তি। সাম্প্রদায়িকতা হলো ধর্মের এই ব্যবহারের একটি রূপমাত্র, যেখানে এক ধর্মীয় সম্প্রদায় অন্য একটি ধর্মীয় সম্প্রদায়ের বিরোধিতা করতে নিযুক্ত থাকে, অন্য সম্প্রদায়ভুক্ত লোকের ক্ষতি করা তার লক্ষ্য হয়।’ এরপর তিনি ভারতের উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, সেখানে সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী প্রচুর মানুষ থাকা সত্ত্বেও ভারতে সাম্প্রদায়িকতা আছে। কিন্তু বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল থাকলেও বাংলাদেশ ভারত নয়, সাম্প্রদায়িকতা এখানে কিছু থাকলেও সেটা জাতীয় কোনো সমস্যা নয়। অর্থাৎ বাংলাদেশে ধর্মভিত্তিক দল বা তার ভাষায় ‘মৌলবাদ’ রয়েছে, কিন্তু উমর মৌলবাদমাত্রই সাম্প্রদায়িক মনে করেন না। কারণ তাদের টার্গেট হিন্দু বা অন্যান্য সম্প্রদায় নয়। তিনি মনে করেন, ‘এদের টার্গেট হলো কমিউনিস্ট, সমাজতন্ত্রী, প্রগতিশীল ও গণতান্ত্রিক শক্তি। সাম্প্রদায়িকতা বাংলাদেশের জাতীয় সমস্যা নয়, এই হিসেবে এর মূল্যায়ন করে এদের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংগ্রাম পরিচালনার জন্য বাস্তব ক্ষেত্রে ও প্রকাশ্যে সক্রিয় হয়েই এদের প্রতিরোধ করতে হবে।’ (দেখুন, ‘সুবিধাবাদীদের সাম্প্রদায়িকতাবিরোধী জাতীয় সম্মেলন’, বদরুদ্দীন উমর, যুগান্তর ২৩ ডিসেম্বর ২০১২)। বদরুদ্দীন উমরের এই লেখাটির গুরুত্ব বিশেষত এখন অনস্বীকার্য। তবে তার সঙ্গে বাংলাদেশের ইসলামপন্থী রাজনৈতিক দলের মূল্যায়নের ক্ষেত্রে আরেকটি দিক যোগ করতে চাই। ইসলামপন্থী দলগুলোর ঘোষিত নীতি যা-ই হোক, ইসলামি আন্দোলনে সক্রিয় জনগণ- বিশেষত তরুণদের বিশাল একটি অংশ রয়েছে, যারা স্নায়ুযুদ্ধের সময় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র কিভাবে ইসলামকে কমিউনিস্টদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছিল, সে ব্যাপারে কিছুটা হলেও ওয়াকিবহাল। কারণ এখন গণতন্ত্রী(?), প্রগতিশীল(?) ও কমিউনিস্টদের মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ কিভাবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবহার করেছে, সে অভিজ্ঞতা থেকেও তাদের কিছু শিক্ষা হচ্ছে। বদ্ধমূল বেকার অনুমানগুলো নাকচ করা জরুরি বাংলাদেশের জনগণ সাম্রাজ্যবাদকে তত্ত্বগতভাবে বুঝতে না পারে; কিন্তু নিজের জীবন দিয়ে বোঝে। যে শ্রমিক পোশাক তৈরির কারখানায় পরিশ্রম করে তিলে তিলে নিজের শরীর ক্ষয় করছে কিংবা পুড়ে মরছে। পুঁজিবাদ কী জিনিস- সেটা সে তার শরীর দিয়েই আন্দাজ করতে পারে। এ ব্যাপারে তাদের নিজেরও বয়ান আছে। সমাজে শ্রেণী যদি থাকে, তাহলে সংগ্রামও থাকবে। সেই সংগ্রামের বয়ান যে মার্কসবাদ-লেনিনবাদ থেকে ধার নিতে হবে কিংবা তার সাথে মিল থাকতে হবে, তার কোনো কথা নাই। নিপীড়িতের এই ভাষা বোঝা দরকার। একইভাবে এই অনুমানও ভুল নয় ইসলামপন্থী দলগুলোরও সমাজ, রাজনীতি, অর্থনীতি ও সংস্কৃতি সম্পর্কে নিজস্ব বয়ান আছে। এই বয়ান বোঝার দরকার আছে। অর্থাৎ নিজের গর্ত থেকে কমিউনিস্টদের বেরিয়ে এসে অন্যদের সঙ্গে কথা বলা দরকার। সে ক্ষেত্রে নিজ কমিউনিস্ট জগতের বাইরের কিন্তু নিজ সমাজের অন্যদের সাথে কথা বলবার ক্ষমতা অর্জন না করলে কমিউনিস্ট রাজনীতি আরো অবক্ষয়ের মধ্যে নিপতিত হবে। বাংলাদেশে এটাই নিয়তি কি না জানি না। সেই ক্ষেত্রে জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই থেমে থাকবে না। আমাদের কাজ হবে তাকে বিকশিত করে বিজয়ের দিকে নিয়ে যাবার অভিমুখ, নীতি ও কৌশল নিয়ে ভাবা। কমিউনিজম বদ্ধ, সঙ্কীর্ণ ও ইসলামি আতঙ্কের রোগী হয়ে বাংলাদেশে হাজির রয়েছে। এ ধরনের কমিউনিজমের কোনো ভবিষ্যৎ নাই এটা কাণ্ডজ্ঞানেই বোঝা যায়। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে মজলুমের লড়াই যদি থেমে না থাকে তাহলে একালে তার চিন্তা, মতাদর্শিক ও কৌশলগত রূপ কী হবে, সেটা সম্পর্কে আমাদের অবশ্যই ভাবতে হবে। চোর বাসন চুরি করে নিয়ে গেছে বলে শ্রমিক, কৃষক মেহনতি মানুষ মাটিতে ভাত খাবে না, সে সম্পর্কে কমিউনিস্ট কমরেডরা নিশ্চিত থাকতে পারেন। পাশাপাশি আরো অগ্রসর পর্যালোচনার দরকার। অসাধারণ অবদান স্বীকার করার পরও কার্ল মার্কসকে চিন্তা জগতের শেষ কিম্বা একমাত্র বাদশাহ ভাববার কোনো দরকার নাই। মার্কস ‘মানুষ’কে তার সমাজ ও ইতিহাসের সারৎসার হিসাবে ভাবতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে নিছকই অর্থনৈতিক এজেন্টে পর্যবসিত করেছিলেন, কিম্বা অন্যদের সেভাবে ভাবতে প্রণোদিত করেছেন। সেই ভুলের বোঝা মাথায় নিয়ে চলবার কোনো যুক্তি নাই। তিনি ইউরোপকেন্দ্রিক চিন্তা থেকে মুক্ত ছিলেন দাবি করা কঠিন। ইতিহাসকে প্রকৃতি বিজ্ঞানের পদ্ধতি দিয়ে তৈয়ার কিম্বা বিশ্লেষণের ওপর তার অকুণ্ঠ বিশ্বাস কম আপদ তৈরি করেনি। বিজ্ঞান চর্চা ও ইতিহাস চর্চার ফারাক নিয়ে অতএব বিস্তর কাজ করবার আছে। এই পরিপ্রেক্ষিতে কিছু বদ্ধমূল ধারণাকে নাকচ করতে হবে। যেমন, ধর্মকে চিন্তার পশ্চাৎপদতা, অর্ধচেতন বা অসম্পূর্ণ অবস্থা মনে করা এবং এটা যুক্তিহীনতা, কুসংস্কার বা সোজা কথায় চিন্তাহীনতা বা দেশকালপাত্র নির্বিশেষে প্রতিক্রিয়াশীল গণ্য করা এই মুখস্থবিদ্যা বাদ দিতে হবে। পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্ক ধর্মসহ নীতিনৈতিকতার ওপর গড়ে ওঠা প্রতিটি সম্পর্ককে সমাজ ও রাষ্ট্র থেকে খারিজ না করে দিয়ে এবং তাকে ‘প্রাইভেট’ ব্যাপারে পরিণত না করে টিকে থাকতে পারে না। কারণ বাজার ব্যবস্থা ও পুঁজির প্রধান চরিত্রই হচ্ছে টাকার কাছে পুরান সকল নীতিনৈতিকতার অবসান ঘটানো। এ কারণে বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে একাট্টা ধর্মবিরোধীদের- বিশেষত বয়ান নির্বিশেষে ‘ইসলাম’ নামের যেকোনো রাজনৈতিক ধারার যারা বিরোধী, তারা মূলত পুঁজির অতি নিম্ন শ্রেণীর দাস ছাড়া অধিক কিছু নয়। এরা ধর্ম যেমন বোঝে না, পুঁজির স্বভাব সম্পর্কেও তাদের কোনো ধারণা নাই। পুঁজির গোলামগণ কমিউনিজমের পতাকা উত্তোলন করে থাকলেও কোনো অবস্থাতেই তারা বাংলাদেশের জনগণের মিত্র হতে পারে না। বাংলাদেশে ঠাণ্ডাযুদ্ধের সময় থেকে হাল পর্যন্ত মোটা দাগে বাম, সেক্যুলার এবং ধর্মীয় ধারার ভেতর ধর্মকে বিচার করবার মূল জায়গাটা ছিল আস্তিকতা/নাস্তিকতা এবং প্রগতিশীলতা/প্রতিক্রিয়াশীলতার দ্বন্দ্ব। আজ এটা স্পষ্ট বোঝার সময় হয়েছে যে, এই দ্বন্দ্ব বর্তমানের ভারী রাজনৈতিক বিতর্কগুলো মীমাংসায় কোনো কাজেই আসবে না; বরং এযাবৎকালের অভিজ্ঞতা থেকে বোঝা যায় তা প্রচণ্ডভাবে প্রতিক্রিয়াশীল চিন্তাচেতনা ও গণবিরোধী রাজনীতির জন্ম দিয়েছে এবং ভবিষ্যতেও দেবে। কিন্তু এর পরও এই প্রশ্নে মজলুম জনগণকে দৃঢ় থাকতে হবে যে, বাংলাদেশে ধর্ম ও ধর্মীয় রাজনীতি বিচার করবার প্রশ্নটিকে পদ্ধতিগতভাবে শ্রেণী রাজনীতির দিক থেকে কিংবা সাম্রাজ্যবাদ/পুঁজিবাদ বিরোধিতার জায়গা থেকেই তুলতে হবে। এর বাইরেও যদি কোনো মুক্তিকামী রাজনৈতিক চিন্তা, ভাব বা বিশ্বাস থেকে থাকে তাহলে তাকেও আমলে আনা দরকার। যেহেতু বাম বা তথাকথিত প্রগতিশীলদের প্রধান কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে ধর্মভিত্তিক রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ ও রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহার নিষিদ্ধ করা আর ফলে তার পাল্টা প্রতিক্রিয়া হিসেবে ইসলামপন্থী দলগুলোর কাজ হয়ে দাঁড়িয়েছে পুরনো স্নায়ুযুদ্ধের নীতি অনুযায়ী কমিউনিজম ও কমিউনিস্টদের বিরোধিতা করা। একদিকে প্রগতিশীলতা আর অন্য দিকে ইসলামের নামে এ ধরনের আত্মঘাতী রাজনীতির বিরোধিতাই বাংলাদেশে জাতীয় রাজনীতির বড় স্রোত হয়ে উঠেছে। এই অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে। কমিউনিস্টদের ভুল রাজনীতি ছাড়াও আরো নানা কারণে গত কয়েক দশকে কমিউনিজম বা কমিউনিস্টদের প্রতি এ দেশের জনগণের সংশয় ও সন্দেহ সৃষ্টি হয়েছে। তার একটি কারণ কমিউনিজমের যে বয়ান আমরা হাজির করি, তার উৎপত্তি পাশ্চাত্যে। এটা এখন স্পষ্ট হওয়া দরকার, পাশ্চাত্য জ্ঞান-শৃঙ্খলার নির্বিচার অধীনতা মেনে এখনকার রাজনৈতিক কর্তব্যসাধন সম্ভব নয়। সাম্রাজ্যবাদ ও পুঁজিবাদের বিরুদ্ধে লড়াই সেক্ষেত্রে স্লোগানসর্বস্ব কেরিকেচার ছাড়া আর কিছুই হবে না, গণমানুষের রাজনীতি হওয়া তো দূরের কথা। আমাদের নতুনভাবে ভাবতে শিখতে হবে এবং পরিবর্তনের জন্য সংখ্যাগরিষ্ঠ জনগণের আকাক্সক্ষা ধারণ করে গণশক্তি নতুনভাবে গঠনের কাজ করবার জন্য চিন্তা ও তৎপরতায় স্বচ্ছতা আনতে হবে। মার্কিন নেতৃত্বাধীন সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধে ইসলামপ্রধান দেশগুলোর বিরুদ্ধে নির্বিচার যুদ্ধ ও হত্যাযজ্ঞ দেখার পরও ইসলামপন্থী অধিকাংশ দল মার্কিনিদের পুরনো বুলি আউড়িয়ে চলেছে। জনগণকে বোঝাতে হবে সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধের বিরুদ্ধে যারাই ধর্ম বা আস্তিকতা/নাস্তিকতার ধুয়া তুলে জনগণের ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে ওঠার ক্ষেত্রে বাধা তৈরি করে, জনগণকে বিভক্ত করেÑ তারা যে পক্ষেরই হোক, জনগণের দুশমন। স্নায়ুযুদ্ধকালে বামদের রাজনীতি ছিল নাস্তিকতার চর্চা। বিপরীতে ইসলামি রাজনীতির বা বাম বিরোধিতার মূল জায়গা ছিল নাস্তিকতা বিরোধিতা; মূলত তারা এ জায়গায় দাঁড়িয়েই কমিউনিস্ট ও কমিউনিজমের বিরোধিতা করেছে। এই দুই ধারা একই সমস্যার দুই দিক মাত্র। বাংলাদেশের এই বাস্তব রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রমাণ করে ধর্ম এবং রাষ্ট্রের সম্পর্ক নিয়ে একটি নির্বিচার অবস্থান আমাদের দেশে জারি রয়েছে। অর্থাৎ পাশ্চাত্যে গড়ে ওঠা ‘আধুনিক রাষ্ট্র’ কায়েমই আমাদের আদর্শ- এই বিচারশূন্যতাকে প্রশ্ন করা দরকার এবং এ বিষয়ে বুদ্ধিবৃত্তিক অনুসন্ধান আরো গভীর করা আমাদের কর্তব্য। সেই কর্তব্যকে রাজনৈতিক কর্তব্য হিসেবেই আমাদের গ্রহণ করতে হবে। সোজা কথায় ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের পারস্পরিক সম্পর্ক বিচার ছাড়া এখন কোনো সাম্রাজ্যবাদ-পুঁজিবাদবিরোধী রাজনীতি সম্ভব নয়। সেটা বামপন্থী বা ইসলামি রাজনীতি উভয়ের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য, যদি তারা প্রত্যেকেই আদৌ জনগণের পক্ষে কোনো ইতিবাচক ভূমিকা রাখতে চায়। বামপন্থার নামে জনগণকে ধোঁকা দেয়ার দিন যেমন শেষ হয়ে গেছে, একইভাবে জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই বাদ দিয়ে ইসলামের নামে রাজতন্ত্র কায়েম কিংবা ধনীকে আরো ধনী ও গরিবকে আরো গরিব বানাবার রাজনীতির দিনও শেষ হয়ে আসছে। বাংলাদেশে গণশক্তি গঠনের প্রশ্ন তাই ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্র্রের মৌলিক বিচার সম্পন্ন না করে অগ্রসর হতে পারবে না। এক কথায় বললে, আধুনিকতার ভিত্তিকে প্রশ্নের সম্মুখীন ও চ্যালেঞ্জ না করতে পারলে আমাদের এগিয়ে যাবার বিকল্প কোনো পথ নাই। আমাদের মনে রাখতে হবে, রাষ্ট্র ও ধর্ম বিভাজনের অনুমানগুলো বা ধর্মকে রাষ্ট্র থেকে পৃথক করবার যে ক্লাসিক্যাল সেক্যুলার প্রস্তাবনা, তার প্রেক্ষিত ইউরোপ। ইউরোপের ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন করে অনৈতিহাসিকভাবে এই বিভাজনকে শাশ্বত ও অনিবার্য ধরে নেয়া ঐতিহাসিক অজ্ঞতা অবশ্যই। তা ছাড়া এই অনুমানের বিস্তর রাজনৈতিক ও দার্শনিক সমস্যা রয়েছে। বাংলাদেশে আমাদের অবশ্যই সেসব সমস্যা নতুন করে বিচার করে দেখতে হবে। বলা বাহুল্য, গণতন্ত্র রাষ্ট্রের একটি ধরন, রাষ্ট্রের এই ধরনের সঙ্গে ধর্মের এই সম্পর্ক অনুধাবনের অক্ষমতা একই সঙ্গে গণতন্ত্র সম্পর্কে অপরিচ্ছন্ন ধারণারও প্রমাণ। অর্থাৎ বাংলাদেশে ধর্মনিরপেক্ষতার এই ধারা প্রতিক্রিয়াশীল ধর্মবিরোধিতা ছাড়া আর কিছুই নয়। বামপন্থীরা প্রায় কখনোই শ্রেণী, পুঁজি, সাম্রাজ্যবাদের জায়গা থেকে ধর্মীয় রাজনীতি বা আন্দোলনের বিচার করে না। একইভাবে ইসলামি আন্দোলনের দিক থেকে দেখা যায়, ইসলাম কায়েমের অর্থ পুঁজিতান্ত্রিক সম্পর্ক ও সাম্রাজ্যবাদী বিশ্বব্যবস্থার কোনো মৌলিক পরিবর্তন নয়, এই ব্যবস্থার ভেতরেই শরিয়া আইন কায়েম, ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠা কিংবা ইসলামি রাষ্ট্র কায়েম। ইসলামি আন্দোলনের এই সঙ্কীর্ণ ধর্মতাত্ত্বিক লক্ষ্য মানুষের ইহলৌকিক সমস্যা ও সঙ্কটের কোনো সমাধান দিতে পারে না। ধর্ম, রাষ্ট্র ও রাজনীতির পারস্পরিক সম্পর্ক বিষয়ে সেক্যুলার প্রস্তাবনা রাজনৈতিক এবং দার্শনিকভাবে যেমন সমস্যাজনক, তেমনি বাংলাদেশে ইসলামী রাজনীতির প্রস্তাবনাও সমান মুশকিলের। বোঝাবুঝির ক্ষেত্রে সব দিক থেকেই আমাদের মারাত্মক ঘাটতি আছে। ইউরোপীয় আধুনিকতা ও পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থা এবং সাম্রাজ্যবাদবিরোধী যেকোনো রাজনীতির জন্য ধর্ম, আধুনিকতা ও রাষ্ট্রের মৌলিক দার্শনিক বিচার সে কারণে জরুরি। ইসলামি আন্দোলনের মধ্যে এখন পর্যন্ত সেক্যুলারিজমের সমালোচনা বা বিরোধিতা জালিম বিশ্বব্যবস্থা অর্থাৎ পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থা ও সাম্রাজ্যবাদের বিরোধিতার আলোকে আমলে নিতে বিশেষ দেখা যায় না কিংবা কথায় বললেও এই জালিম ব্যবস্থাকে বুঝেসুঝে নীতি ও কৌশল নির্ণয়ে ব্যর্থতাই লক্ষণীয়। কৃষক শ্রমিকের লড়াইয়ে বা মজলুমের অধিকার সংগ্রামে ইসলামপন্থীরা উপস্থিত নাই বললেই চলে। সবচেয়ে বিপজ্জনক হলো- রক্ত, বর্ণ, দেশ, জাতি, ভাষা ও সংস্কৃতির ঊর্ধ্বে দুনিয়ার সব মানুষকে এক করে জালিম বিশ্বব্যবস্থা উৎখাতের রাজনৈতিক আদর্শ বা বয়ান নির্মাণের সবচেয়ে অপার সম্ভাবনা ইসলামের আছে। এটাই ইসলামের মৌলিক প্রস্তাবনা। অথচ অন্তর্গত বিষয় হলেও নিজেদের আন্দোলনকে বিশ্বমানুষের মুক্তি বা বিশ্ব মানবসমাজ কায়েমের আন্দোলন হিসেবে না দেখে ইসলামপন্থীরা তাকে অন্য সব ধর্ম, সম্প্রদায় ও জাতির বিরুদ্ধে শুধুই মুসলমানদের লড়াই হিসেবে হাজির করে। ফলে বিশ্ব পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থার বিরুদ্ধে তাদের ন্যায়সঙ্গত লড়াইও বহুলাংশে সঙ্কীর্ণ ও সীমাবদ্ধ হয়ে যায় এবং কার্যকর হয় না, একটি বিশেষ ধর্ম সম্প্রদায়ের লড়াইয়ের সীমা অতিক্রম করে সে লড়াই বৈশ্বিক ও সর্বজনীন রূপ পরিগ্রহণ করে না। বাংলাদেশে এই দিকগুলো আরো সম্যকভাবে উপলব্ধি করা জরুরি। এ কথাগুলোর সঙ্গে যদি আমরা একমত হতে পারি, তাহলে বহুদূর এগিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। তাই বলছিলাম, কমিউনিস্টদের দুর্দশা ও করুণ অবস্থা দেখে আমরা যেন ভুলপথে না হাঁটি। ফরহাদ মজহার: কবি, কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক ই-মেইল : farhadmazhar@hotmail.com উৎসঃ Breakingnews পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৩ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম এমাজউদ্দিন আহমেদ test@gmail.com গণতন্ত্র এবং গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি 14 March 2016, Monday সমাজে সংস্কৃতি-চেতনা প্রাণবন্ত না হলে গণতন্ত্র লাভ করে না এর কাঙ্ক্ষিত গভীরতা। প্রবেশ করে না সমাজ-জীবনের গভীরে। জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ধারণ করে তা জীবনব্যবস্থারূপে জনগণের নিজস্ব কর্মধারায় রূপান্তরিত হয় না। সংস্কৃতি যেমন ব্যক্তিকে ছাপিয়ে হয়ে ওঠে সমগ্রের এক বিশিষ্ট পরিচয়, গণতন্ত্রও সৃষ্টি করে সমাজে বলিষ্ঠ এক জীবনবোধ। সমাজ-জীবনে আনে সৃজনশীলতার প্রাণবন্যা। দুই-ই চলে পাশাপাশি, হাত ধরাধরি করে। একটি পিছিয়ে গেলে অন্যটি হাত বাড়ায় সহায়তার। হাত ধরে তোলে পড়ে গেলে। পরস্পরের দ্যুতিতে হয় উজ্জ্বল। এ দিক থেকে বলা যায়, সংস্কৃতি ও গণতন্ত্র একে-অপরের ওপর নির্ভরশীল। গণতন্ত্রের ব বেড়ে ওঠা অথবা সৌন্দর্য বাড়ানো গণতান্ত্রিক কাঠামোর ওপর নির্ভর করে না। নির্ভর করে কাঠামো ছাপিয়ে গণস্বার্থের অন্তরঙ্গ রসে সিক্ত চেতনার ওপর। গণতন্ত্র এক দিকে যেমন এক আর্থ-সামাজিক-রাজনৈতিক ব্যবস্থা বা সিস্টেম, অন্য দিকে তেমনি তা গণস্বার্থ তুলে ধরার এক প্রক্রিয়া বা প্রসেস। গণদাবির প্রতি মাথানত করার প্রক্রিয়া। জনকল্যাণমূলক সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়া ও ব্যবস্থা হিসেবে গণতন্ত্র জনগণের আশা-আকাক্সক্ষা ধারণ করে। মানবাধিকার নিশ্চিত করে। সাম্য, মৈত্রী, সৌভ্রাতৃত্বের মতো মানবের সনাতন দাবি মাথায় নিয়ে পথ চলে। প্রক্রিয়া হিসেবে গণতন্ত্র সিদ্ধান্ত নেয়ার প্রক্রিয়ায় সর্বাধিক সংখ্যক ব্যক্তিকে সম্পৃক্ত করে। ব্যক্তিগত বুদ্ধির পরিবর্তে সামগ্রিক প্রজ্ঞার ওপর নির্ভরশীল হয়। দৈহিক বলের বদলে মানসিক শ্রেষ্ঠত্বকে শ্রেষ্ঠজ্ঞান করে। এভাবে সংস্কৃতি রাজনীতির সাথে যুক্ত হয়ে গণরাজনীতির পথ সুগম করে। গণতন্ত্রকে প্রাণবন্ত করে। গণতান্ত্রিক কাঠামোর দিকে তাকিয়ে তাই গণতন্ত্রের পরিচয় লাভ করা সম্ভব নয়। গণতন্ত্রের পরিচয় পেতে হলে দৃষ্টি দিতে হয় কাঠামোর অভ্যন্তরে স্পন্দিত অন্তঃকরণের দিকে, কাঠামো ছাপিয়ে যে মনন জাগ্রত হয় তার দিকে। কাঠামো রচিত হয় বাইরের চাপে, দাবি-দাওয়ার প্রবল ঝড়ের মুখে। গণতান্ত্রিক কাঠামোর অভ্যন্তরে অন্তঃকরণ কিন্তু উজ্জীবিত হয় উদারতার নীল আকাশের স্পর্শে, সৃজনশীলতার স্রোতস্বিনীর কোমল পরশে। সত্যি বটে, গণতন্ত্র ও সংস্কৃতি দুয়েরই শুরু ব্যক্তিকে কেন্দ্র করে। ব্যক্তিজীবনকে সুন্দর ও সুরুচিসম্পন্ন করেই সংস্কৃতি হয়েছে অর্থপূর্ণ। ব্যক্তিত্বের সুষম বিকাশ ঘটিয়ে, ব্যক্তিকে সঙ্কীর্ণতার অন্ধকার থেকে আলোয় টেনে এনে, সবার সাথে চলার এবং বলার জন্য উপযোগী করে সংস্কৃতিই ব্যক্তির সামনে সম্ভাবনাময় উন্নত সামাজিক জীবনের সিংহদ্বার উন্মুক্ত করেছে। গণতন্ত্রও সেভাবে ব্যক্তিকে তার সঙ্কীর্ণ ব্যক্তিত্বের গুহা থেকে টেনে এনে মিলিয়েছে সমাজের বিস্তীর্ণ উপত্যকায়। তাই দেখা যায়, উন্নত সংস্কৃতির ঘাটে ভিড়েছে সাম্য, স্বাধীনতা ও সৌভ্রাতৃত্বের সোনার তরী। যে সমাজে সংস্কৃতির মান এখনো উন্নত নয়, সেখানে গণতন্ত্রের যাত্রাপথ এখনো বন্ধুর, এখনো পিচ্ছিল। গণতান্ত্রিক কাঠামো থাকবে, থাকবে না গণতন্ত্রের প্রাণরস। থাকতে পারে নির্বাচন, কিন্তু সে নির্বাচনে প্রতিফলিত হবে না গণইচ্ছা। সংসদ থাকতে পারে, থাকবে না শুধু সংসদীয় দায়িত্বশীলতা। থাকবে হয়তো মন্ত্রিপরিষদ, কিন্তু না-ও থাকতে পারে মন্ত্রীদের দায়বদ্ধতা। সবাই হয়তো জনগণের কথা বলবেন, তাদের কার্যক্রমে কিন্তু থাকবে না জনগণের আশা-আকাক্সক্ষার প্রতিফলন। এমন বিকৃতি দেখা দিলে তা হবে সীমাহীন দুর্ভোগের কারণ। স্বৈরতন্ত্রে পচন ধরলে তা হয় পুঁতিগন্ধময়। সবাই ঘৃণায় তখন তা থেকে দূরে সরে যায়। গণতন্ত্রে বিকৃতি দেখা দিলে বহু দিন পর্যন্ত কিন্তু তা লোকচক্ষুর গোচরে আসে না। যখন আসে তখনো তা তেমন ঘৃণার উদ্রেক করে না। তাই বলছি, উন্নত সংস্কৃতির সৌরভে গণতন্ত্র প্রাণবন্তু হোক। সব বিকৃতির ঊর্ধ্বে উঠে হোক গৌরবময়। সংস্কৃতি গড়ে ওঠে ধীরে ধীরে, সমাজ-জীবনের তীর ঘেঁষে, ইতিহাসের স্রোতোধারায় অভিজ্ঞতার বালুকণার মধ্যে স্বর্ণরেণুর মতো। ইচ্ছামতো সংস্কৃতি তৈরি করা যায় না। কারো নির্দেশ বা খেয়ালখুশিমতো তো নয়ই। জাতীয় জীবনের প্রয়োজনমাফিক দরজি বা কারিগরের হাতে সংস্কৃতির কাটছাঁটও সম্ভব নয়, যদিও যুগে যুগে একনায়কেরা কিছুসংখ্যক পশ্চাৎগামী ও পরাশ্রয়ী বুদ্ধিজীবীকে এ কাজে ব্যবহার করেছেন। সমাজের উর্বর ক্ষেত্র থেকে সংস্কৃতির চেতনা উঠে আসে এবং সমাজ-জীবনের দু’কূল ছাপিয়ে তা জাতীয় সংস্কৃতি হিসেবে পরিচিতি লাভ করে। জাতীয় সম্পদে রূপান্তরিত হয়। এ সম্পদে যে জাতি সমৃদ্ধ, সে জাতি প্রকৃতই গণতান্ত্রিক। গণতন্ত্রের প্রধান অঙ্গীকার হলো সমাজের প্রত্যেক ব্যক্তিকে ‘পরিপূর্ণ, স্বতন্ত্র এবং স্বাধীন একক’ হিসেবে অনুধাবন করা। প্রত্যেক ব্যক্তি স্বয়ংসম্পূর্ণ ও অনন্য। তাই গণতন্ত্রে নেই কোনো শাসক, নেই কোনো শাসিত। শুধু রয়েছে শাসনব্যবস্থা পরিচালনা এবং তা জনগণের সম্মতি সাপেক্ষে। গণতন্ত্রের আরেকটি অঙ্গীকার আইনের প্রতি আনুগত্য, কোনো ব্যক্তিসমষ্টির নির্দেশের প্রতি নয়। এ দিক থেকে বলা যায়, গণতন্ত্র হলো আইনের শাসন। জনপ্রতিনিধিদের সক্রিয় অংশ নেয়ার মাধ্যমে যে বিধিবিধান রচিত হলো শাসনব্যবস্থা পরিচালনার জন্য তাই মুখ্য নিয়ামক, অন্য কিছু নয়। গণতন্ত্রের এসব অস্বীকার সমাজ-সংস্কৃতির অন্তর্ভুক্ত হলে গণতন্ত্রের জয়যাত্রা অব্যাহত থাকবে। উপনিবেশ-উত্তর রাষ্ট্রগুলোতে অবশ্য পরিস্থিতি ভিন্ন। বারবার ক্ষতবিক্ষত হয়ে এসব সমাজ যেমন স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায় বিকশিত হতে পারেনি, তেমনি সমাজ চেতনা এবং সংস্কৃতিও গড়ে ওঠেনি সুষ্ঠুভাবে, সব কিছু যেন দুমড়ে-মুচড়ে গেছে। সব কিছুই এলোমেলো। আত্মরক্ষার প্রবণতায় শুধু যে তা রক্ষণশীল হয়েছে তাই নয়, হয়ে উঠেছে অনেকটা স্ববিরোধী, কৃত্রিম এবং প্রায় সব ক্ষেত্রেই খণ্ডছিন্ন, শতধাবিভক্ত। ধর্ম, বর্ণ, আঞ্চলিকতার সঙ্কীর্ণ গণ্ডিতে হয়েছে আবদ্ধ। মানবিক স্বার্থের দ্যুতিতে এখনো উজ্জ্বল হয়ে ওঠেনি। গণতন্ত্রের যাত্রাপথ তাই এসব সমাজে সহজ হয়নি, সরল হয়নি। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনকারীদের একাংশ গণতান্ত্রিক পন্থায় অগ্রসর হতে দ্বিধা করে না। দায়িত্বশীলতার দোহাই দিয়ে নেতৃত্ব গড়ে ওঠে, কিন্তু অচিরেই সে নেতৃত্বও দায়িত্বহীনতার পক্ষে হয় নিমজ্জিত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলনকারীদের একাংশ অগণতান্ত্রিক উপায়ে অগ্রসর হতে দ্বিধা করে না। দায়িত্বশীলতার দোহাই দিয়ে নেতৃত্ব গড়ে ওঠে, কিন্তু অচিরেই সে নেতৃত্বও দায়িত্বহীনতার পঙ্কে হয় নিমজ্জিত। আইনের শাসন প্রতিষ্ঠার স্লোগানে কিছু দিন আগে যারা ছিলেন সোচ্চার, তাদের বড় এক অংশ বেআইনি কর্মে হয়ে পড়েন লিপ্ত শুধু সংস্কৃতি-চেতনার অভাবে অথবা অপরিণত সংস্কৃতির প্রভাবে। গণতন্ত্রের বড় শত্রু গণতন্ত্রীরাই, বিশেষ করে তাদের নেতৃস্থানীয়রা। এসব সমাজে গণতন্ত্র বারবার বিধ্বস্ত হয়েছে তাদেরই হাতে, যারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে এক সময় নেতৃত্ব দিয়েছেন। নিজেদের ক্ষুদ্র স্বার্থের ঊর্ধ্বে তারা ক্বচিৎ উঠতে পারেন। সরকার পরিচালনার দায়িত্বে যারা থাকেন তারা সহ্য করেন না বিরোধী দলকে। বিরোধী দল সহ্য করে না সরকারকে। তীব্র অসহিষ্ণুতার মরুভূমিতে গণতন্ত্রের ধারা হয় নিঃশেষ অথবা প্রাণহীন। ধারা ক্ষীণগতিতে প্রবাহিত থাকে বটে, কিন্তু তা জীবনব্যবস্থায় রূপান্তরিত হয় না। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা সম্পর্কেও জনগণের মনে জাগ্রত হয় এক ধরনের অনীহা, অনাস্থা ও ঘৃণা। এ অবস্থা থেকে মুক্তি পাওয়ার একমাত্র পথ সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে গণতন্ত্রকে সমাজ-জীবনে প্রতিষ্ঠা করা। যারা তা করতে পেরেছে, গণতন্ত্রকে স্থিতিশীল করার সংগ্রামে তারা জয়ী হয়েছে। এ শতকের শেষপ্রান্তে তাই গণতন্ত্রায়নের যে ধারা প্রবাহিত হচ্ছে তার স্থিতিশীলতার জন্য প্রয়োজন গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির উন্নত মানের। প্রয়োজন উদার মনোভাবের সাথে গণতান্ত্রিক কাঠামোর সংমিশ্রণ। প্রয়োজন সংস্কৃতি ও গণতন্ত্রচর্চার ধারাকে অব্যাহত রাখা। গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি গড়ে ওঠে ধীরে ধীরে। সজ্ঞান উদ্যোগে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতি রাতারাতি বিনির্মাণ করা সম্ভব নয়। সম্ভব নয় কারো নির্দেশে সংস্কৃতির কাঠামো রচনা করা। সম্ভব নয় বিশেষ কারো ইঙ্গিতে সংস্কৃতির প্রবাহকে নির্দিষ্ট খাতে প্রবাহিত করা। সংস্কৃতি গড়ে ওঠে স্বতঃস্ফূর্তভাবে, সামাজিক জীবনের স্রোতোধারায় জমে ওঠা বালুকণার মধ্যে স্বর্ণরেণুর মতো। গড়ে ওঠে রাজনৈতিক জীবনের প্রতি বাঁকে বর্তমানকে ধারণ করে এবং ভবিষ্যতের ইঙ্গিত বহন করে। সংস্কৃতি যেন মন্থরগতি এক স্রোতস্বিনী। প্রবাহিত হয় নিজস্ব ভঙ্গিতে, আপন সত্তার সৃজনশীল ধারায়। সংস্কৃতি অনড় নয়, নয় স্থবির। যে জনপদে সংস্কৃতি স্থবির হয়ে উঠেছে, সে জনপদও স্থবিরপ্রায়। তার অগ্রযাত্রা রুদ্ধ। নতুন প্রত্যয়ে তা উজ্জীবিত হয় না। নতুন সৃষ্টির সঙ্কল্পে তা হয় না আন্দোলিত। স্রোতহীন বদ্ধ জলাশয়ে শ্যাওলাই জন্মে। পরিবর্তনহীন সাংস্কৃতিক ব্যবস্থায় অপসংস্কৃতির বিকৃতিই মুখ্য হয়ে ওঠে। বাংলাদেশের মতো উন্নয়নশীল সমাজে, বিশেষ করে উপনিবেশ-উত্তর সমাজে সংস্কৃতিকে সুনির্দিষ্ট খাতে প্রবাহিত করার জন্য রাজনৈতিক উদ্যোগ নিতে প্রায়ই দেখা যায়। কোনো সময় জাতীয় পুনর্গঠন বা জাতীয় ঐক্যের নামে, আবার কোনো সময় জাতীয় সংস্কৃতি বিনির্মাণের লক্ষ্যেও এসব উদ্যোগ গৃহীত হয়। গঠিত হয় কমিটি বা কমিশন। সদস্য হন দেশের খ্যাতনামা সংস্কৃতিকর্মী, বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদেরা। রিপোর্টে তারা সমাজের মনমানসিকতার উপযোগী সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডল রচনার নির্দেশ নিয়ে থাকেন, যেন সংস্কৃতি জামাকাপড়ের মতো। দরজির মতো এসব বুদ্ধিজীবী পরিধেয় পরিচ্ছদের দৈর্ঘ্য-প্রস্থের মাপ ঠিক করে দেন। কারিগরের মতো নির্দেশ দেন কোথায় তা আলগা হবে আর কোথায় হবে আঁটসাঁট। সংস্কৃতিকে পরিবর্তন বা পরিবর্ধনের এসব উদ্যোগ অবশ্য গৃহীত হয় অগণতান্ত্রিক ব্যবস্থায়। জেনারেল আইয়ুব এবং জেনারেল এরশাদের আমলে আমাদের সমাজে এ ধরনের উদ্যোগ গৃহীত হয়েছিল। কিন্তু ওইসব উদ্যোগও যে সাংস্কৃতিক বিকৃতির লক্ষণ, তা এ সমাজ টের পেয়েছে বারবার। সংস্কৃতি সম্পর্কে গণতন্ত্রের দৃষ্টিভঙ্গি অবশ্য স্বচ্ছ। শত পথ ও শত মতের মধ্যেই গণতন্ত্রের সার্থকতা। শত ফুল ফোটাতেই গণতন্ত্র সবচেয়ে বেশি আগ্রহী। সহস্র বন্ধনের মাঝেই গণতন্ত্র মুক্তি খোঁজে। যার যা ভালো, তারই সমাবেশ ঘটিয়ে মালা গাঁথে গণতন্ত্র। গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় তাই সব বিষয়ে কমিশন গঠিত হতে পারে, কিন্তু সাংস্কৃতিক রূপরেখা নির্দিষ্ট করার জন্য বা সংস্কৃতি পুনর্গঠনের জন্য কোথাও কোনো কমিশন গঠিত হতে দেখা যায় না। কোথাও গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির রূপ নির্ধারিত হয়নি কোনো কমিশনের সুপারিশে। কোনো কমিশনের রিপোর্টের মাধ্যমে জাতীয় সংস্কৃতি এতটুকু প্রভাবিত হয়নি কোনো সময়।গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির মান উন্নত হয় নিরবচ্ছিন্ন সংস্কৃতিচর্চার মাধ্যমে। এ জন্য প্রয়োজন নেই কোনো দরজি বা কারিগরের। প্রয়োজন সমাজচিন্তাবিদদের, রুচিশীল মননশীল কর্মবীরের। প্রয়োজন উদার মনোভাব, সংবেদনশীল মন মানবপ্রকৃতির সঠিক অনুধাবন এবং সমস্বার্থের সুষম বন্ধনে আবদ্ধ থাকার সৃজনশীল মননশীলতা। আমার জন্য যা উত্তম, অন্যের নিকট উত্তম ঠিক তাই। আমার যা প্রয়োজন, অন্যের প্রয়োজনও ঠিক তাই- এ সত্যের অনুধাবনই এ পথের দিশারী। সমাজবিজ্ঞানে এ মনোভাব গণতান্ত্রিক অঙ্গীকার নামে পরিচিত। বিশ্বময় গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার সুদৃঢ় ভিত্তিই গণতান্ত্রিক অঙ্গীকার। গণতান্ত্রিক সমাজে ক্ষমতাসীন এবং ক্ষমতা লাভে আগ্রহী দলই শুধু নয়, সমাজের সর্বত্র এ সত্য স্বীকৃত যে, প্রত্যেক ব্যক্তি ব্যক্তিত্বসম্পন্ন, আপন সত্তায় উজ্জ্বল, এক অর্থে অনন্য। নিজের কার্য পরিচালনায় সক্ষম। সক্ষম সুশাসন এবং স্বশাসন প্রতিষ্ঠায়। সমাজে এ বিশ্বাসের ভিত্তিতে জন্ম লাভ করে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ এবং পারস্পরিক বিশ্বাস। জন্ম লাভ করে অপরের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হয়ে সমঝোতার মনোভাব। গণতান্ত্রিক অঙ্গীকারের এটি হলো প্রথম উপাদান। সামাজিক সমস্যার বহুবাচনিক দিক সম্পর্কে অবহিত থাকা গণতান্ত্রিক অঙ্গীকারের আরেকটি উপাদান। অসংখ্য স্বার্থের মোজাইকে গড়া সামাজিক জীবন। এসব স্বার্থ কোনো সময় হয়ে ওঠে পরস্পরবিরোধী, প্রতিযোগিতামূলক তো বটেই। এসব ভিন্নমুখী, প্রতিদ্বন্দ্বী স্বার্থের সহাবস্থান নিশ্চিত করার জন্য প্রয়োজন হয় বিভিন্ন গ্রুপ ও গোষ্ঠীর মধ্যে এক ধরনের ঐকমত্য; প্রত্যেকে বক্তব্য উপস্থাপন করবে। প্রত্যেকে বক্তব্য উপস্থাপন করবে নির্ভয়ে। প্রত্যেকের বক্তব্য অন্যরা গ্রহণ করবে শ্রদ্ধার সাথে। জাতীয় ঐক্যের কাঠামোয় মতামত প্রকাশের স্বাধীনতা সর্বজনগ্রাহ্য। পত্রপত্রিকার মুখ খোলা। খোলা থাকবে সাংবাদিকের চোখ-কান। গণতন্ত্র এভাবে পথ চলে। চলে সমগ্র জনসমষ্টি একসাথে। নির্বাক হয়ে নয়, বরং মুখর হয়ে। জনৈক রাষ্ট্রনায়কের কথায়, গণতান্ত্রিক সমাজে বিদ্যমান থাকে ‘হাজারো আলোক কেন্দ্র’ (a thousand points of lights)। ভিন্ন স্বার্থগোষ্ঠীর বহুবাচনিক গণতান্ত্রিক সমাজের রূপই এমন। প্রত্যেকের কথা বলবে। প্রত্যেকের থাকবে সুপারিশ করার অধিকার। প্রত্যেকের থাকবে বিরোধিতার অধিকারও। রাজনীতিসচেতন জনসমষ্টির কাছে সমাজের এই রূপ সুস্পষ্ট হলে সমাজে জন্ম লাভ করবে সহনশীলতা, আপসকামী মনোভাব এবং সবাইকে সাথে নিয়ে অগ্রসর হওয়ার আকাক্সক্ষা। শত দল এবং হাজারো পথের ঊর্ধ্বে উঠে সবাই শিখবে পথ চলতে। প্রতিদ্বন্দ্বিতা ও বিরোধিতার মাঝেও ঝঙ্কৃত হবে ঐক্য ও মিলনের সুর। রাজনৈতিক সৃষ্টির মান হবে উন্নত। গণতন্ত্র হবে স্থিতিশীল। লেখক : রাষ্ট্রবিজ্ঞানী ও সাবেক ভাইস চ্যান্সেলর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় উৎসঃ নয়াদিগন্ত পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 07 Mar, 2016 বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক সংস্কৃতির আকাল 29 Feb, 2016 সামাজিক ও রাজনৈতিক ব্যবস্থা হিসেবে গণতন্ত্র 22 Feb, 2016 জনগণ ও রাজনীতিক 15 Feb, 2016 অগ্রগতি অর্জনে রাজনৈতিক প্রতিবন্ধকতা 08 Feb, 2016 বুদ্ধিবৃত্তিক চর্চায় বাংলাদেশ 31 Jan, 2016 বাংলাদেশে গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ 25 Jan, 2016 দেশের অর্থনীতি কোন পথে? 18 Jan, 2016 একজন জাতীয়তাবাদী সৈনিক জিয়া 17 Jan, 2016 বাংলাদেশে গণতন্ত্রের কাঠামো 10 Jan, 2016 গণতন্ত্র : চাইলেই ধরা দেয় না 22 Dec, 2015 বাংলাদেশ চায় রাষ্ট্রনায়ক 14 Dec, 2015 বিচার বিভাগের স্বাধীনতা এবং আইনের শাসন 06 Dec, 2015 মুক্তিযুদ্ধের চেতনার স্বরূপ 30 Nov, 2015 ভবিষ্যতের উপযোগী রাজনৈতিক নেতৃত্ব 15 Nov, 2015 গণতন্ত্রের শত্রু-মিত্র 01 Nov, 2015 গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ 12 Oct, 2015 রাজনীতি এবং নৈতিকতা 05 Oct, 2015 রাজনীতির দুর্বৃত্তায়ন নয়, প্রয়োজন সুস্থ রাজনীতির বিকাশ 02 Oct, 2015 বাজার অর্থনীতি ও গণতন্ত্রের ভবিষ্যৎ 01 Sep, 2015 বিএনপির ঐতিহাসিক ভূমিকা 01 Jul, 2015 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় : আমাদের স্বপ্নের শিক্ষায়তন 19 May, 2015 সার্কের সাফল্যের জন্য প্রয়োজন আঞ্চলিক দৃষ্টিভঙ্গি 04 Mar, 2015 রাজনীতি ও সহিষ্ণুতা 02 Feb, 2015 সংকট উত্তরণের পথ 16 Dec, 2014 এবারের বিজয় দিবসে আমার প্রার্থনা Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 28 May 2016, Saturday ঠাট্টা করে নয়, বাংলাদেশের সমাজকে আপনি সিরিয়াসলি ‘সত্যবাদীদের সমাজ’ বলতে পারেন। রাজনীতিও এখানে সত্য কায়েমের রাজনীতি। এখানে সমাজের বিবদমান সব পক্ষই সত্যবাদী। অর্থাৎ প্রতিটি পক্ষই মনে করে সত্যে শুধু তাদেরই একচেটিয়া। একমাত্র তারাই সত্যবাদী, আর মিথ্যা শুধু অন্য পক্ষে। সত্যবাদী সমাজে বিবদমান পক্ষ অপর পক্ষের কোনো কথা থাকতে পারে সেটা মনে করে না। প্রতিপক্ষ মানেই সত্যের দুশমন। এ ধরনের সমাজে নির্মূল আর কতলের রাজনীতি ছাড়া অন্য কোনো রাজনীতি গড়ে ওঠার সম্ভাবনা খুবই কম। সব পক্ষই যখন সত্যবাদী, আর মিথ্যা যখন শুধু অন্য পক্ষে তখন তো হানাহানি-হিংসা-রক্তপাত ঘটবেই। বাংলাদেশে দুর্নীতি ও রাজনৈতিক দুর্বৃত্তপনা আছে, এটা তো অস্বীকার করার কোনো উপায় নাই। কিন্তু সত্য-মিথ্যা সম্পর্কে যে মানসিকতার চর্চা আমরা সমাজে ও রাজনীতিতে করি, হিংসা ও হানাহানির ক্ষেত্রে তার ভূমিকাই মুখ্য কিনা সেটাই আমাদের ভেবে দেখা দরকার। তার মানে এই নয় যে আমরা সত্য অন্বেষণ করব না, সত্য প্রচার ও সত্য কায়েমের জন্য সমাজে তৎপরতা চালাব না। অবশ্যই চালাব। ধর্ম, দর্শন, বিজ্ঞান ছাড়াও পদ্ধতিগত চিন্তার বাইরে কাব্য, সংস্কৃতি ও নানা ধরনের নান্দনিক চর্চার মধ্য দিয়ে মানুষ পরমার্থের সত্য নির্ণয়ের প্রয়াস চালায়; নিজ নিজ চর্চার ক্ষেত্র থেকে পরমকে বাসনা করে; জানা ও বোঝার চেষ্টা করে। সেই জানা ও বোঝা কখনও সে ফ বিশ্বাস ও উপলব্ধির, কখনও বুদ্ধি ও যুক্তির, কখনও পদ্ধতিগত চিন্তা কিংবা ফর্মাল সিস্টেম থেকে জাত সিদ্ধান্ত, ইত্যাদি। সর্বোপরি সেটা মানুষের সব ইন্দ্রিয় জ্ঞান, প্রবৃত্তি ও প্রতিভাকে কাজে খাটিয়ে অবস্থাভেদে সত্য-মিথ্যার ভেদবিচার ও তাৎপর্য নির্ণয়। এই শেষের যে অন্বেষণ তাকে বাংলা ভাষায় আমরা বলি, ‘সহজ’ভাবে উপলব্ধি করা, সহজভাবে বোঝা : ‘সহজ’। আমরা কিছু বুঝতে না পারলে পাশ থেকেই কেউ একজন বলে, বুঝছো না কেন? এটা তো খুবই সহজ। আসলে বলা হল, আমরা যেন ইন্দ্রিয়োপলব্ধি, বুদ্ধি, কল্পনা, সংকল্প ইত্যাদি সব দৈহিক সম্পদ কাজে খাটাই, বিষয়ে নিবিষ্ট হই। কেবল তখনই বিষয় ধরা দেবে। আমরা যা বুঝতে চাইছি তা বুঝব। বিশ্বাস, উপলব্ধি, জ্ঞান-বিজ্ঞান চর্চা কিংবা নান্দনিক বোধের ক্ষেত্রগুলো পরস্পর থেকে আলাদা। তাদের সত্যের ধারণা এক নয়। তাদের অন্বেষণ ও সিদ্ধান্ত নেয়ার পদ্ধতিও এক নয়। কিন্তু সত্যবাদী সমাজের মুশকিল হচ্ছে, বিষয় বিদ্যার ভেদ এবং বিষয়ীর সঙ্গে বিষয়ের সম্বন্ধ সম্পর্কে কোনো পক্ষেরই কোনো হুঁশ থাকে না। বিজ্ঞানবাদীরা বিজ্ঞানের পদ্ধতি দিয়ে ধর্ম বুঝতে চায়, ধর্মের বিশ্বাস ও উপলব্ধিকে নাকচ করতে চায়। সত্যের উপলব্ধি আর সত্য নির্ণয়ের মধ্যে যে আকাশ-পাতাল ভেদ সেটা বিজ্ঞানবাদী জানে না এবং বোঝেও না। তারা প্রমাণ করতে ব্যস্ত আল্লাখোদা বলে কিছুই নাই, সবই নবী-রাসূলদের প্রতারণা, একমাত্র বিজ্ঞানবাদীরাই সত্যবাদী, সত্যে একমাত্র তাদেরই একচেটিয়া। তাই তারা কুৎসিত ভাষায় নবী-রাসূলদের বিরুদ্ধে হেন কোনো নোংরা কথা নাই যা লেখে না বা বলে না। ভ্যাটিকানের পোপ ফ্রান্সের শার্লি হেবদো কার্টুন ম্যাগাজিনের ভূমিকার সমালোচনা করতে গিয়ে বলেছিলেন, আমার বাবা সম্পর্কে কেউ যদি বাজে কথা লেখে, তাহলে আমি তো নাকে একটা ঘুষি দেবই। মানুষের ভালোবাসার মানুষটির বিরুদ্ধে কুৎসিত ভাষায় কেউ যখন লেখালেখি করে তখন সেটা মানুষেরই অমর্যাদা। মানবিক মর্যাদা মানবাধিকারের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। আপনি ধর্মের কিংবা ধর্মগুরুদের সমালোচনা করুন, সেটা চিন্তা ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা। কিন্তু যখন তার প্রকাশভঙ্গি হয়ে ওঠে নবী-রাসূলদের কুৎসা রটানো, প্রতিপক্ষকে উসকানি, কদর্য চিৎকার, তখন তা আর মতপ্রকাশের স্বাধীনতার পরিমণ্ডলের ব্যাপার হয়ে থাকে না। সেটা হয়ে ওঠে অপরকে আক্রমণ ও অপমান করা। অপরের অমর্যাদা করা। মানবিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করা। সমাজে তা একটা মহা হুলস্থূল ও দাঙ্গা-হাঙ্গামা ঘটায়। বিজ্ঞানবাদী অর্থাৎ যারা বিজ্ঞান দিয়ে ধর্ম বুঝতে চায়, কিংবা উপলব্ধির বিচার যুক্তি দিয়ে করতে গিয়ে প্রেম, ভালোবাসা, স্নেহ, সামাজিক সম্বন্ধ ও সম্পর্ক, বিশেষত রাজনীতির আর আগাপাছ কিছুই বুঝতে পারে না- তারা প্রাগৈতিহাসিক জীব। মানুষের চিন্তা চর্চার ইতিহাসে যেসব বিপ্লব ঘটে গিয়েছে সে সম্পর্কে তাদের কোনো হুঁশ নাই। আল্লাহ আছেন কী নাই এ প্রাচীন দার্শনিক তর্ক নিয়ে এরা এখনও পড়ে আছে। এমন এক সত্তা সম্পর্কে তারা অতি আগ্রহে সিদ্ধান্ত দিতে চায় যে সত্তা সম্বন্ধে কিছু জানার বা বোঝার পদ্ধতি তার আয়ত্তে নাই। সে স্পুটনিক নিয়ে আসমান ঘুরে এসে বলে, ‘খুঁজে এলাম, আল্লাহ নাই।’ একে বলে প্রাগৈতিহাসিক নাস্তিক্যবাদ। অতি আজব চিজ। আধুনিককালে নাস্তিক্যবাদের যদি আদৌ কোনো উপযোগিতা থেকে থাকে তবে তা জ্ঞানতাত্ত্বিক তর্কে নয়, বরং কী কী বিষয় যুক্তি বা বুদ্ধির অন্তর্গত নয় তাকে বোঝা এবং বুদ্ধির ভূগোল বা সীমানা চিহ্নিত করতে শেখা। কেন? যাতে মানুষ ব্যাপারটা ভালো করে বোঝা যায়। যে মানুষ ইহলৌকিক, যার ইতিহাস আছে এবং চিন্তা ক্ষমতাসম্পন্ন। অতএব সে যুক্তি ও বুদ্ধির বাইরে তার বিশ্বাস কিংবা উপলব্ধির জায়গা থেকে আল্লাহ সম্পর্কে ভাবে। প্রাগৈতিহাসিক জীব হওয়ার কারণে বাংলাদেশের নাস্তিক্যবাদীদের কাছে এসবের কোনো খবর নাই। কিন্তু তারা সত্যবাদী, সত্যে তাদেরই শুধু একচেটিয়া। তারাই মুক্তবুদ্ধির সিপাহসালার। বীর ব্লগার! বীর প্রাগৈতিহাসিক নাস্তিক্যবাদী ব্ল­গাররা বাংলাদেশকে যুদ্ধক্ষেত্রে পরিণত করেছে। তাদের নিজেদের ক্ষমতায় তারা নিজেরাই বিস্মিত ও অভিভূত!! অপরদিকে ধর্মবাদীরা তাদের বিশ্বাসের উপলব্ধি দিয়ে বিজ্ঞানের বিচার করতে বসে। উপলব্ধির সত্যকে যুক্তির মেশিনে ফেলে যেমন বিচার করা যায় না, তেমনি যুক্তির শক্তিকে উপলব্ধির সত্য দিয়ে নাকচ করা অসম্ভব। সবচেয়ে বিপজ্জনক হচ্ছে এই যে, ইসলাম শুধু ধর্ম জগতের জন্য নয়- উপলব্ধি, যুক্তি ও প্রজ্ঞার জগতের জন্য নতুন ও অভূতপূর্ব যেসব জিজ্ঞাসা হাজির করেছে, সেসব জিজ্ঞাসার তাৎপর্য বিচারের কোনো পরিবেশ ও পরিস্থিতি ধর্মবাদীরা গড়ে উঠতে দেয় না। ধর্ম সম্পর্কে তাদের ব্যাখ্যাই চূড়ান্ত। একমাত্র তারাই সত্যবাদী। এর ফলে আমরা বিজ্ঞানবাদিতা ও ধর্মবাদিতার মধ্যে হানাহানি ও খুনাখুনির মহাবিপদে পড়ে গিয়েছি। বাংলাদেশের বর্তমান বাস্তবতা বিচার করে সত্যবাদী সমাজ কথাটা আমি যে ঠাট্টা করে বলিনি সে কথা বোঝানোর জন্যই এত কথা বললাম। আশা করি কিছুটা বোঝাতে পেরেছি। বাকিটা সত্যবাদীদের হানাহানি থেকে বুঝে নেয়া কঠিন হবে না। দুই এখন সত্যবাদীদের হানাহানি আমরা বন্ধ করব কীভাবে? একটা হতে পারে ‘সহজ’ভাবে উপলব্ধি করা, ‘সহজ’ভাবে বোঝা, ‘সহজ’ভাবে অপরের সঙ্গে সম্বন্ধ রচনার জন্য সবাইকে উৎসাহিত করা। এটা একটি পথ হতে পারে। কিন্তু সেটা সম্ভব যদি আমরা আসলেই ‘সহজ’ কথাটার অর্থ ঠিকভাবে বুঝতাম। তাহলে আমরা সহজভাবে ধর্ম বুঝতাম, ধর্মের ভূমিকা বুঝতাম। সহজভাবে বিজ্ঞানের ভূমিকা বিচার করতে পারতাম। তেমনি সহজভাবে অর্থনীতি, রাজনীতি, সংস্কৃতি জানতে, বুঝতে ও বিশ্লেষণ করতে পারতাম। কিন্তু আমরা তো সবেমাত্র শব্দটির সঙ্গে পরিচিত হলাম। আমাদের ভাষায় ‘সহজ’ আছে। কিন্তু আমরা যেভাবে এখানে বোঝার চেষ্টা করছি সেভাবে নাই। ‘সহজ’ বাংলার ভাবান্দোলনের খুবই গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। সহজ মানে জন্মকালেই ‘মহাজন’-এর কাছ থেকে পুঁজি হিসাবে মানুষ যা নিয়ে এসেছে। এ মহাজনকে যার যার বিশ্বাস অনুযায়ী ভিন্ন ভিন্ন নামে মানুষ ডাকে। মানুষের সঙ্গে বা মানুষের মধ্যে জন্মমুহূর্ত থেকেই যা সহজাত, মানুষের জন্মের সঙ্গেই যে জন্মলাভ করেছে সেই হচ্ছে সহজ। সহজ অর্থাৎ একসঙ্গে যার জন্ম এই অর্থে সহজ। সহজ মানুষের ধর্ম হচ্ছে আশেকানির ধর্ম। কারণ বিশ্বাসকে বুদ্ধি থেকে আলাদা কিংবা বুদ্ধিকে প্রজ্ঞা থেকে বিখণ্ডন আমাদের সহজভাবে বাস্তবকে বোঝা ও বাস্তবের সমস্যার মীমাংসা করা কঠিন করে তোলে। কিন্তু এসব বিষয়ে আমাদের নিজেদের কোনো গবেষণা নাই। আমরা ধরে নিয়েছি এদেশের মানুষ কোনো চিন্তা করতে জানে না। সব চিন্তা পেপসিকোলা-কোকাকোলার মতো ফর্মুলা মোতাবেক টিনের ক্যানের প্যাকেজ হয়ে আসতে হবে। নিজেদের চিন্তা নিজেরা উৎপাদন করা, নিজেরাই প্যাকেট করে সিল ছাপ্পর কপিরাইটসহ বিদেশে রফতানির মুরোদ আমাদের নাই। একালের চিন্তায় কিংবা রাজনীতিতে এসব ধারণার আদৌ কোনো উপযোগিতা আছে কিনা সেটা বিচার করার কাজ তো অনেক পরের এবং অনেক দূরের ব্যাপার। আগে তো জানা দরকার ‘সহজ’ নামে বাংলাদেশের ভাবচর্চায় যে ধারণাটি বহাল সেটা কেমন? দর্শন বা ভাবগত চর্চার জন্য যা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের ইন্দ্রিয়, বুদ্ধি, প্রজ্ঞা ও অপরাপর প্রবৃত্তি বা প্রতিভার অখণ্ড মনোযোগ যদি কোনো সমস্যার প্রতি নিবদ্ধ বা নিবিষ্ট হয় তাহলে আমরা তা সহজে সমাধান করতে পারি। তাহলে সত্যবাদীদের কারণে যে হানাহানি ও হিংসার সমাজ আমরা গড়ে তুলেছি, তা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার সহজ উপায় হচ্ছে সহজভাবে বাস্তবের সমস্যা নিয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে শেখা। সমাধান অবশ্যই আমাদের হাতের কাছেই আছে। আমরা পাশ্চাত্য চিন্তার অধীনতা মানি এবং গোলামি করি। গোলামি মানে চিন্তার অক্ষমতা নয়। বরং আমরা চিন্তা করতে সমর্থ নই এ বিশ্বাস। এ বিশ্বাস আমাদের মধ্যে বদ্ধমূল হয়ে যাওয়ার কারণেই আমরা গোলাম, নিজের ভাগ্য নির্ণয়ের কর্তা হিসেবে আমরা নিজেদের আর ভাবতে পারি না। আমাদের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ নির্ণয় করে গুলশান-বারিধারার কূটনৈতিকপাড়া। পাশ্চাত্য চিন্তার বাছবিচার করে আমরা কিছু গ্রহণ কিংবা বর্জন করতে সক্ষম নই। শুধু পাশ্চাত্য কেন, কোনো চিন্তারই পর্যালোচনা আমাদের ধাতে নাই। অতএব মনিবের হুকুমে চলা কিংবা অন্যের মুখে ঝাল খাওয়াকে আমরা সঙ্গত মনে করি। দ্বিতীয়ত, গোলাম তার নিজের ইতিহাস থেকে বিচ্ছিন্ন ও বিচ্যুত। আমরা মনে করি আমাদের জ্ঞানচর্চার, চিন্তাশীলতার বা ভাবুকতার কোনো ঐতিহ্য নাই। অতএব পাশ্চাত্যের সবকিছুই আমাদের নির্বিচারে মেনে নিতে হবে। এসব কারণে বাংলার ভাবচর্চার প্রতিও আমাদের কোনো আগ্রহ নাই। বোঝা যাচ্ছে এই পথটা অনেক দীর্ঘ। নিজেদের ভাষা ও সংস্কৃতির অন্তর্গত হলেও নতুন। আমরা খুব তাড়াতাড়ি সেই দিকে যেতে পারব না। এ পরিপ্রেক্ষিতে আমি বিনীতভাবে এখনকার দুই-একটি প্রস্তাব করতে চাই। বিজ্ঞজনরা বিবেচনার জন্য গ্রহণ করলে খুশি হব। যদি প্রাথমিক উপলব্ধিতে একমত হই তাহলে বহুদূর এগিয়ে যাওয়া যাবে। সত্যবাদী সমাজের বড় সমস্যা হচ্ছে রাজনীতি সম্পর্কে ধারণা। এ সমাজে রাজনীতির অর্থ হল নিজ নিজ সত্যের বা মতাদর্শের ঝাণ্ডা নিয়ে প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে জিহাদে ঝাঁপিয়ে পড়া। এ সমাজের অনুমান হচ্ছে, সত্যে যেহেতু আমারই একচেটিয়া, অতএব অপরকে নির্মূল করাই আমার একমাত্র রাজনৈতিক কর্তব্য। সত্যের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক বিচার গুরুত্বপূর্ণ। একালে রাষ্ট্রবিজ্ঞানেরও প্রধান জিজ্ঞাসা হচ্ছে, রাজনীতির জন্য কোনো মতাদর্শিক ভিত্তি বা সত্যের পাটাতন নির্মাণ আদৌ জরুরি কি? সমাজে আদর্শ, মতাদর্শ ও দর্শন চর্চা তো থাকবেই। বিশ্বাস, উপলব্ধি, যুক্তি, বুদ্ধি, কল্পনা, সংকল্প, প্রজ্ঞা ইত্যাদি সব কিছু নিয়েই মানুষ। তাহলে মানুষের সমাজে এ সবকিছুরই স্ফূর্তির দরকার। তাহলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিভিন্নভাবে সত্যের অন্বেষণ মানুষ করবেই। সেক্ষেত্রে ধর্ম, দর্শন ও ভাবচর্চার গুরুত্ব বাড়তে থাকবে। এটা আন্দাজ করা যায়। কিন্তু সত্য অন্বেষণ সবসময়ই নিঃসঙ্গ ও একাকী ইবাদত। এই নির্জন, নিঃসঙ্গ ও একাকী অন্বেষণের গুরুত্ব অন্য যে কোনো অন্বেষণের চেয়ে চরিত্রের দিক থেকে আলাদা। দ্বিতীয়ত, সত্যের উপলব্ধিও সমাজে সবার একরকম হবে না। তাহলে উপায় কী? সত্য অন্বেষণের সঙ্গে রাজনৈতিক পরিসরের সম্পর্ক কী? এ পরিপ্রেক্ষিতে রাজনৈতিক পরিসরের কর্মকাণ্ডের উদ্দেশ্য কী সেটা একালে দার্শনিকদের প্রধান জিজ্ঞাসা হয়ে উঠেছে। রাজনীতির উদ্দেশ্য কি সত্য কায়েম নাকি সেই পুরনো প্রকল্প যার ওপর সমাজ গড়ে উঠেছিল? এটা পরিষ্কার রাজনীতির এমন একটি পরিসর যা না থাকলে সমাজ টেকে না। কেন? কারণ রাজনৈতিক পরিসরের কাজ হচ্ছে সত্য নির্ণয় নয়, বরং সমাজকে কোনো একটি সামাজিক বন্ধনের ওপর দাঁড় করিয়ে রাখা যায়। নইলে সমাজ আর সমাজ থাকে না। ভেঙে পড়ে। সমষ্টির যা ভালো, সবার যা কল্যাণ সেই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয়া। সমাজে সত্যের নানা রূপ আছে। সত্য অন্বেষণের নানা প্রকরণ ও পদ্ধতি রয়েছে। মানুষের চাওয়া-পাওয়া এক রকম নয়। অথচ সমাজকে টিকিয়ে রাখতে হলে অবশ্যই শক্তিশালী রাজনৈতিক পরিসরের দরকার আছে। এর কোনো বিকল্প নাই। এ পরিসরের কাজ সত্য নিয়ে তর্কাতর্কি নয়। বরং সবার কীসে মঙ্গল সেই বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করা এবং সিদ্ধান্ত নেয়া। আবারও বলি, বিশ্বাস, উপলব্ধি, যুক্তি, বুদ্ধি, কল্পনা, সংকল্প, প্রজ্ঞা ইত্যাদি সবকিছু নিয়েই মানুষ। তাহলে মানুষের সমাজে এ সবকিছুরই স্ফূর্তির দরকার। ধর্মবাদিতার নামে বিজ্ঞানের বা বিজ্ঞান চর্চার বিরোধিতা কিংবা বিজ্ঞানবাদিতার নামে ধর্মের বিরুদ্ধে জিহাদি হয়ে ওঠার প্রাগৈতিহাসিকতা থেকে বেরিয়ে এসে আমাদের মানুষের ইতিহাসে প্রবেশ করতে শিখতে হবে। সেটা করতে হলে মিনতি হচ্ছে এই যে, রাজনৈতিক পরিসরের গুরুত্ব যেন আমরা বুঝি। রাজনৈতিক পরিসর খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ধারণা। সবার মঙ্গল কীসে হয় সে সম্পর্কে সবার সঙ্গে আলোচনা, সবার সঙ্গে পরামর্শ, বিভিন্ন পক্ষের মধ্যে তর্ক-বিতর্কের পরিসর আমরা কি গড়ে তুলতে পারব? বাংলাদেশকে কি সত্যবাদীরা লণ্ডভণ্ড করে দেবে? দেশটি টিকবে কি? এটাই হচ্ছে প্রশ্ন। উৎসঃ যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 24 September 2016, Saturday সমাজ পরিবর্তন সম্পর্কে যেসব প্রথাগত শব্দ ও ধারণা আমাদের সমাজে জারি রয়েছে, তা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই মুখস্থ উচ্চারণ; সক্রিয় ও সজীব চিন্তার সঙ্গে তার সম্পর্ক সামান্যই। আমরা এমন এক সমাজে বাস করি যেখানে চেনাজানা শব্দ বা ধারণা নিয়ে বিচার ও পর্যালোচনার আদৌ কোনো প্রয়োজন আছে বলে আমরা মনে করি না। এই অবস্থা এখন লোহার মতো শক্ত হয়ে গিয়েছে, ভাঙা রীতিমতো মুশকিল। কিন্তু সমাজ ও রাজনীতির সংস্কার বলি কিংবা বৈপ্লবিক রূপান্তর- চেনাজানা শব্দ ও ধারণা নিয়েই আমরা মেরামতের কাজ কিংবা ভেঙে আবার নতুনভাবে গড়ার কথা ভাবতে পারি। সেই মোতাবেক কাজ করি। তাহলে সেই শব্দ বা ধারণাগুলো বলতে আমরা কী বুঝি, তার সঙ্গে আমরা কী অর্জন করতে চাই, তা পরস্পর থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। কিন্তু আমরা কি আদৌ বোঝাবুঝির ধার ধারি? অথচ আমরা হরদম বিপ্লব, গণতন্ত্র, সুশাসন, সংবিধান, আইন ইত্যাদি গুরুত্বপূর্ণ নানান পরিভাষা ব্যবহার করে যাচ্ছি। এ শব্দগুলো দিয়ে আমরা কী বুঝি আসলে? এই শব্দগুলোকে আশ্রয় করেই সমাজ, রাজনীতি, শাসনব্যবস্থা বা রাষ্ট্রের কায়কারবারে আমরা অংশগ্রহণ করি। তাহলে কীভাবে শব্দগুলো আমরা বুঝি, তার সঙ্গে আমাদের চলমান রাজনীতি সরাসরি জড়িত। বিদ্যমান রাজনীতির পর্যালোচনা করতে গিয়ে অতি পরিচিত দৈনন্দিন ব্যবহৃত শব্দ নিয়ে নানান সময়ে আমি লেখালেখি করেছি। এতে কিছু কিছু ফল হয়নি তা নয়; কিন্তু যে ফল পেলে আমরা পাথরের মতো শক্ত হয়ে থাকা চিন্তার দেয়াল ভাঙতে পারি, সেই ফল পাওয়া অনেক সাধ্য সাধনার বিষয়। তাতে কোনো ক্ষোভ নাই। একটি সমাজ চিন্তার ক্ষেত্রে হঠাৎ বিরাট কিছু বদল ঘটিয়ে দিতে পারে না। এটা একটি শ্লথ ও নীরব প্রক্রিয়া। তাছাড়া এর সঙ্গে শিক্ষাব্যবস্থা, সাংস্কৃতিক আন্দোলন, সাহিত্য চর্চা ইত্যাদির সম্পর্ক রয়েছে। দুই-একটি লেখা কিংবা কোনো একটি মহাগ্রন্থ লিখলেই সমাজ রাতারাতি বদলে যায় না। কিন্তু চিন্তাশীল লেখালেখি, অর্থাৎ সজীব ও সক্রিয় চিন্তার চর্চা ছাড়া একটি সমাজের পক্ষে সংস্কার কিংবা বিপ্লব কোনোটিই সম্ভব নয়। সমাজে চিন্তার স্তর কোথায় কোন অবস্থায় রয়েছে সেটা পত্রিকার কলাম পড়ে বাংলাদেশের যে কোনো বুদ্ধিমান মানুষ আন্দাজ করতে পারবেন। কিংবা টেলিভিশনের টকশোতে কারা কী বিষয় নিয়ে কীভাবে কথা বলছেন তার দ্বারাও বুদ্ধিমান শ্রোতা অনেক কিছুই বুঝতে পারেন। এগুলো প্রাথমিক ব্যারোমিটারের মতো। তবে আমরা কোথায় আছি সেটা একমাত্র পর্যালোচনামূলক লেখালেখির মধ্য দিয়েই শনাক্ত করা সম্ভব। এ ক্ষেত্রে কোনো শর্টকাট নাই। আমি মনে করি, রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডের জন্য কয়েকটি নির্ধারক পরিভাষা আছে, যার পর্যালোচনা ছাড়া বাংলাদেশে কোনো ইতিবাচক রূপান্তর অসম্ভব। যেমন, ‘বিপ্লব’। এই ধারণাটি বলতে আমরা কী বুঝি? তরুণ বয়সীদের জন্য এটা অনেকটা জেমসের গান কিংবা হুমায়ূন আহমেদের উপন্যাসের মতো। বোঝার দরকার নাই, শব্দটির ঝংকার আর ভালো লাগাই আমাদের বুদ্ধিকে জয় করে নেয়। শেষাবধি তা আবেগ ও বাগাড়ম্বরের অধিক কিছু হয় না। হয়ে ওঠে গান গাওয়া বা গল্প বলার মতো কাল্পনিক ব্যাপার, যেখানে বুদ্ধির ব্যবহার বা প্রজ্ঞার বিচার-বিবেচনার দরকার নাই। ‘বিপ্লব’ শব্দটি বাম মহলের ধারণা। কিন্তু মার্কস, লেনিন, মাও জে দং বা অন্য কোনো বিপ্লবী এ ধারণাটি কোন্ অর্থে কীভাবে ব্যবহার করেছেন সে ব্যাপারে আমাদের সমাজে কোনো পর্যালোচনামূলক আলোচনা আমার আজ অবধি চোখে পড়েনি। অথচ ‘বিপ্লবের’ জন্য বাংলাদেশে কম তরুণ আত্মাহুতি দেয়নি। দুই বৈপ্লবিক রূপান্তরের প্রশ্ন তাহলে সামগ্রিক বাস্তব পরিস্থিতিকে আমলে নিয়ে কর্তব্য নির্ধারণ। জনগণকে স্রেফ তত্ত্ব দিয়ে ‘বিপ্লব’ কথাটার মানে বোঝানো যায় না। আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্য দিয়েই তারা সেটা বোঝে। ‘বিপ্লব’ কথাটার ব্যবহারিক অর্থ সম্পর্কে বাংলাদেশের একসময়ের বিপ্লবী রাজনীতি খুব অস্পষ্ট ছিল বলা যায় না। শব্দটির অন্তর্গত রোমান্টিক অনুমান বা আকাক্সক্ষা দ্বারা পঞ্চাশ থেকে সত্তর দশকের বিপ্লবীরা আপ্লুত হননি তা নয়; কিন্তু সেই সময় বাম ধারার মধ্যে কিছু গৎবাঁধা প্রশ্ন ছিল। যেমন, বাংলাদেশে বিপ্লবের স্তর কী? এখনকার রণনীতি ও রণকৌশল কী হবে? প্রশ্ন করার ধরনের মধ্যেই নিহিত রয়েছে, বিপ্লব কোনো বিমূর্ত চিন্তা ছিল না। একটি দেশের সুনির্দিষ্ট অবস্থা বিবেচনায় নিয়ে কর্তব্য নির্ধারণ, কী কাজ করতে হবে তার পরিকল্পনা; ইত্যাকার বিষয় বিবেচনায় নেয়ার মধ্য দিয়েই বিপ্লব বলতে বিশেষ সময়ে বিশেষ অবস্থায় কী বোঝায় সেটা বোঝানো হতো। বিপ্লব সর্বকালে সব অবস্থায় একই রকম রাজনৈতিক কর্তব্য সম্পাদন নয়। বৈপ্লবিক সংকল্পের বিশেষ রূপ রয়েছে। কী সম্ভব আর কী সম্ভব নয় সেসব দিক বিচার করার দায় রয়েছে। তবে দুর্ভাগ্য হল, কর্তব্য নির্ধারণ করতে গিয়ে বাংলাদেশের অর্থনীতি, শ্রেণী ও সমাজ নিয়ে যে ঘনিষ্ঠ গবেষণার দরকার ছিল, বামপন্থীরা সেই বুদ্ধিবৃত্তিক কাজ করেননি। ফলে ছোট ছোট চটি প্রচার পুস্তিকা দিয়ে বাংলাদেশে পুঁজিবাদ এসেছে নাকি এখনও সামন্তবাদ, আধা সামন্তবাদ ইত্যাদি রয়ে গিয়েছে- সেই তর্কে তারা নানান ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছিলেন। প্রশ্ন তোলা হয়েছিল ঠিকই, কিন্তু প্রশ্নের উত্তর দেয়ার জন্য যে বুদ্ধিবৃত্তিক প্রস্তুতির দরকার ছিল, বামপন্থীদের মধ্যে তার প্রকট অভাব ছিল। সেটা তাদের দোষ বা সীমাবদ্ধতা হিসেবে ভাবলে ভুল হবে। এখন মার্কস-লেনিন-মাওসহ দরকারি বই প্রায় সবই ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। কিন্তু ষাট দশকেও গুরুত্বপূর্ণ বই হাতে লিখে পড়তে হতো। বাংলাদেশে নতুন শিক্ষিত মধ্যবিত্ত শ্রেণী বেড়ে ওঠা খুব বেশি দিনের কথা নয়। বৈপ্লবিক চিন্তার বিকাশ বুর্জোয়া শ্রেণীর বিকাশ ও বুর্জোয়া চিন্তা-চেতনার পর্যালোচনার মধ্য দিয়েই ঐতিহাসিকভাবে ঘটার কথা। যেখানে বুর্জোয়া বিকাশই ঘটেনি সেখানে বামপন্থা বড়জোর পেটি বুর্জোয়া প্রতিক্রিয়াশীলতার অধিক কিছু হয়ে উঠতে পারে না। ওঠা সম্ভব নয়। বাংলাদেশের ক্ষেত্রে তা-ই ঘটেছে। বাঙালি জাতীয়তাবাদের উত্থানের মুখে বামপন্থা তাসের ঘরের মতো উড়ে গেল। শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভায় এখন বামপন্থী অনেকে শোভাবর্ধন করছেন। পঞ্চাশ থেকে আশির দশক অবধি বামপন্থী চিন্তা-চেতনার ইতিহাস বিচার করলে আমরা নিশ্চিত হব, যাদের আমরা এখন ফ্যাসিস্ট রাজনীতি ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার অলংকার হিসেবে দেখছি, তাদের চিন্তার মধ্যে সেই সম্ভাবনা ষোল আনা হাজির ছিল। তিন আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পরিভাষা হচ্ছে গণতন্ত্র। এ নিয়ে আমি বহু লেখালেখি করেছি। গণতন্ত্র মানে নির্বাচন- এ রকম নির্বাচনবাদী ধারণা কিছুটা হলেও পপুলারিটি হারিয়েছে। কিন্তু যে দিকটা বোঝানো তুলনামূলকভাবে কঠিন সেটা হচ্ছে গণতন্ত্র মানে রাষ্ট্রের একটি বিশেষ ধরন, যেখানে কথিত ‘সংবিধান’ দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালিত হয় না, সেটা পরিচালিত হয় ‘গঠনতন্ত্র’ বা কন্সটিটিউশন দিয়ে। তাহলে রাষ্ট্রের জীবনে একটা মূহূর্ত রয়েছে, যাকে আমরা তার জন্মমুহূর্ত বলতে পারি, যখন রাষ্ট্রটিকে গঠন করা হয়। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের জন্ম দেয়ার অনুমান হচ্ছে, সেই গঠনের কাজটা জনগণ করে, বাইরের কোনো রাজা বা কোনো রাজনৈতিক দল নয়। আমি দীর্ঘদিন ধরে একটি কথা বারবার বলে আসছি, সেটা হল, বাংলাদেশের জনগণকে রাষ্ট্র গঠনের অধিকার থেকে বাহাত্তর সালে বঞ্চিত করা হয়েছে। বাংলাদেশের জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে যুদ্ধ করেছে তিনটি নীতি কায়েমের জন্য। সেটা হল- সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ইনসাফ বা সামাজিক ন্যায়বিচার। এই তিনটি নীতির কথা বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণায় স্পষ্টভাবেই উল্লেখ করা আছে। জনগণের এই তিনটি নীতি প্রতিষ্ঠার জন্য যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে প্রয়োজনীয় রাষ্ট্র ‘গঠন’ বা ‘কন্সটিটিউট’ করার কথা। যুদ্ধের মধ্য দিয়ে জনগণ এই তিনটি নীতিকে শুধু ঐতিহাসিক ন্যায্যতা দেয়নি, একে সাংবিধানিক বা আইনি মর্যাদাও দিয়েছে। এর ভিত্তিতে রাষ্ট্র গঠন করা না হলে তা ঐতিহাসিক ও আইনি উভয় দিক থেকেই অবৈধ। এ দিকটি বোঝা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কীভাবে জনগণ সেই কাজটি করল, তারই ফল হচ্ছে কন্সটিটিউশন বা গঠনতন্ত্র। জনগণ সেটা করে একটি ‘রাষ্ট্র গঠনসভা’ বা Constituent Assembly নির্বাচন করার মধ্য দিয়ে। যাদের কাজ হচ্ছে জনগণ ঐতিহাসিকভাবে যে ইচ্ছা ও অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে তাকে ‘গঠনতান্ত্রিক’ বা কন্সটিটিউশনাল রূপ দেয়া। এর বাইরে কিছু করার অধিকার জনগণ কাউকে দেয়নি। ঐক্যবদ্ধভাবে শত্রুর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার শর্ত হচ্ছে এই তিন নীতি : সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও ই্নসাফ বা ন্যায়বিচার। কিন্তু যুদ্ধের পর আমরা কী দেখলাম? দেখলাম, যুদ্ধের মধ্যে জনগণ যে অভিপ্রায় ব্যক্ত করেছে এবং ঐক্যবদ্ধভাবে লড়েছে, তাকে সম্পূর্ণ পদদলিত করে একটি দলের কর্মসূচিকে দেশের নীতি হিসেবে চাপিয়ে দেয়া হয়েছে। বলা হল, বাংলাদেশ নামক রাষ্ট্র চারটি নীতির ওপর দাঁড়ানো : গণতন্ত্র, সমাজতন্ত্র, ধর্মনিরপেক্ষতা ও বাঙালি জাতীয়তাবাদ। ‘গণতন্ত্র’ কোনো নীতি নয়, এটা রাষ্ট্রের রূপ বা ধরন। গণতন্ত্র ছাড়া বাকি তিন নীতি বাংলাদেশের জনগণের কোনো অভিপ্রায়ের বাইরের বিষয়। চাপিয়ে দেয়া নীতি। যারা এই ইতিহাসের খবর রাখেন, তারা বাংলাদেশের সংবিধানে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ঘোষণা পড়ে দেখতে পারেন। দেখা যাচ্ছে ‘গণতন্ত্র’ কথাটার মানে যদি আমরা বুঝি তাহলে এটাও বুঝব যে, বাহাত্তরে জনগণের অভিপ্রায়ের বিরুদ্ধে একটি ‘সংবিধান’ প্রণয়ন করা হয়েছে, যা মুক্তিযুদ্ধের চেতনা, ঘোষণা ও প্রতিশ্র“তির বিরোধী। বাংলাদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার অর্থ হচ্ছে এই দিকটি বোঝা, এর বিরোধিতা করা এবং স্বাধীনতার ঘোষণার সঙ্গে সঙ্গতি রেখে নতুনভাবে বাংলাদেশ ‘গঠন’ করা। এটাই এখনকার গণতান্ত্রিক বৈপ্লবিক কর্তব্য। রাজনীতির পরিভাষা এবং বাস্তবের সঙ্গে তার সম্পর্ক অনুধাবন বাংলাদেশের জন্য এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। আশা করি আমরা তা দ্রুত বুঝতে পারব। উৎসঃ যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:খালি পেটে রোজ চা খান? জানেন কি হতে পারে? Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য খালি পেটে রোজ চা খান? জানেন কি হতে পারে? 07 Oct, 2016 অনেকেই আছেন, যাদের আড়মোরা ভাঙে বাসিমুখে গরম চায়ে চুমুক দিয়ে। বেড-টি তাদের চাই-ই চাই। এতটা না-হলেও বাসিমুখ ধুয়ে ব্রেকফার্স্টের আগে একপ্রস্থ চা হয়ে যায়, এমন লোকজনও আছেন। এই খালিপেটে যাঁরা দিন শুরুই করেন চা দিয়ে, ভবিষ্যতের কথা ভেবে এখনই সাবধান হোন। কারণ আমরা কী খাবার খাচ্ছি, কতটা জল বা পানীয় সারাদিনে গ্রহণ করছি, তার উপর নির্ভর করে সারাদিন আমাদের কেমন যাবে। সকালে খালি পেটে পানি পান স্বাস্থ্যের পক্ষে যতটা ভালো, চা কিন্তু নয়। সকালের আমেজ আনতে গিয়ে নানা রোগের শিকার হতে পারেন। ক্ষুধামান্দ্য : খালি পেটে চা খাওয়ার সবচেয়ে বড় কুফল হলো খুদামান্দ্য। খালি পেটে চা পড়লে, গ্যাসট্রিক মুকোসা বাড়ে, যার জন্য খিদে মরে যায়। পাকস্থলি স্ফীতি : খালি পেটে কালো বা র'-চা আপনার পাকস্থলি স্ফীতিরও কারণ হয়ে উঠতে পারে। অ্যাসিডিটি : চা বাই নেচার অ্যাসিডীয়। যে কারণে খালি পেটে চা খেয়ে অ্যাসিডিটি সমস্যা হতে পারে। বমিবমি ভাব : চায়ে থাকা ট্যানিন থেকে বমি ভাব আসতে পারে। প্রস্টেট ক্যানসার : দিনে ৪-৫ কাপ করে চা ছেলেদের প্রস্টেট ক্যানসারের আশঙ্কা বাড়িয়ে তোলে। ক্লান্তি : ক্লান্তি দূর করতে আমরা সকালে উঠে চা খাই। কিন্তু খালি পেটে দুধের চা তাত্‍‌ক্ষণিক আমেজ আনলেও সারাদিন ক্লান্তির সৃষ্টি করতে পারে। যার জন্য মেজাজও খিটখিটে হতে পারে। আলসার : খালি পেটে কড়া করে চা, আপনাকে আলসারের দিকে ঠেলে দিতে পারে। গ্যাসট্রিকের সমস্যা : আদা দেয়া চা রোজ খালিপেটে খাবেন না। গ্যাসট্রিক অনিবার্য। বদহজম : চায়ে থাকা ক্যাফেইন, থিওফিলিন জাতীয় পদার্থের জন্য আপনি বদহজমে ভুগতে পারেন। তাই বেড-টি খেয়ে আলসেমি কাটানো আগে দ্বিতীয়বার ভাবুন। উৎসঃ ndailynayadiganta.com প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 10 Oct, 2015 দক্ষিণ এশিয়ায় জমজমাট কিডনি ব্যবসা! 05 Sep, 2015 অর্থলোভে অহেতুক অস্ত্রোপচার 04 Jul, 2015 ঘুষ দিন, সেবা নিন 06 Nov, 2016 পান সুপারিতে মুখের ক্যান্সার : সচেতনতায় লন্ডনের বাঙালী পাড়ায় সরকারী প্রচারাভিযান 26 Aug, 2016 বড়দের ওষুধ খাচ্ছে শিশুরা 07 Aug, 2016 রেডিয়েশনের ক্যান্সার ঝুঁকিতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ! 22 Jun, 2016 বোমা তৈরির সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেক বিস্কুট 21 Jun, 2016 অ্যাসিড ও কাপড়ের রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কোমল পানীয়! 28 Apr, 2016 সাবধান, লিচুতে নতুন ভাইরাস 22 Apr, 2016 সেবা নয়, বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে বারডেম হাসপাতাল 09 Apr, 2016 শিশুখাদ্যে প্লাস্টিক: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভবিষ্যত! 09 Apr, 2016 দেশের শতভাগ মিষ্টি, ৭৫ ভাগ সয়াবিন তেলে ভেজাল 09 Apr, 2016 ১০ টাকার ডাক্তার! 16 Feb, 2016 শেকৃবিতে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উদ্ভিদ 07 Feb, 2016 বাংলাদেশেও ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্মাতে পারে 04 Feb, 2016 শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে, কারণ ফাস্টফুড 03 Feb, 2016 প্রতিবন্ধিত্বের ৩ শতাংশই ভুল চিকিৎসায় 01 Feb, 2016 দেশে নতুন রোগের প্রকোপ 27 Jan, 2016 সাবধান! মাছ-মুরগির খাদ্যে ক্যানসারের বীজ 27 Jan, 2016 ভয়ানক এক রোগে আক্রান্ত দেশের লাখো টিন এজার, যুবক-যুবতী ! 27 Jan, 2016 মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া >>শাকসবজিও নিরাপদ নয়! 26 Jan, 2016 পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে যে ৭৫ হাসপাতাল 21 Jan, 2016 পাউরুটিতে জেলির নামে এ কী ব্যবহার হচ্ছে ! 16 Jan, 2016 বিষাক্ত কয়েলের ধোঁয়ায় কমছে প্রজনন ক্ষমতা 16 Jan, 2016 নেত্রকোনার অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু,আক্রান্ত অনেকে 28 Dec, 2015 ভিডিও >> অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত 24 Dec, 2015 অ্যান্টিবায়োটিক ‘নেশা’ ঘরে-ঘরে 20 Dec, 2015 মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দামি খাবার দেশে! 17 Dec, 2015 ‘মানবিক ভুল!’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই অজুহাত আর কতদিন? 06 Dec, 2015 ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ, খুলে দেয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 24 August 2016, Wednesday জীব প্রকৃতি লৌকিক, কিন্তু যাকে আমরা মানুষের প্রকৃতি বা মানুষের স্বভাব বলে বোঝার চেষ্টা করি, তাকে লৌকিকতার সীমার মধ্যে নির্দিষ্ট করা, শনাক্ত করা ও বিচার করা কঠিন। রহস্য মনে হলে এ কারণে বলা যায়, মানুষ অলৌকিক, কিন্তু সেটা শর্ত সাপেক্ষে। অর্থাৎ লৌকিকতা ও অলৌকিকতার সম্বন্ধ বিচারের মধ্য দিয়েই মানুষের গল্প খানিকটা বলা যায়। মানুষকে কিছুটা চেনাও হয়তো যায়। আর, মানুষ তার গল্প মানুষের ইতিহাস হিসেবে পৃথিবীতে লিখে যেতে পারে। মানুষ তার কল্পনা ও ইচ্ছা অনুযায়ী ইতিহাস হতে পারে। তাহলে বিশ্বাস ও মতের পার্থক্য একটি সমাজ কিভাবে মীমাংসা করে তার ওপর মূলত একটি সমাজের শক্তি নির্ভর করে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঐতিহাসিক বাস্তবতার কারণে ভাষা ও জাতিবোধের মধ্যে আমরা নিজেদের মধ্যে রাজনৈতিক ঐক্যের ক্ষেত্র খুঁজে পেয়েছিলাম। কিন্তু সেটা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে বিশ্বাস, দৃষ্টি ও চিন্তার পার্থক্যের নিরাকরণ ঘটিয়ে দিতে পেরেছে এই অনুমান তখন যেমন মারাত্মক ও বিপজ্জনক ভুল ছিল, সেটা এখন আরও ভয়াবহ ভুল হিসেবে হাজির হয়েছে। জাতিবোধ বা জাতীয়তাবাদকে শ্বাশ্বত গণ্য করার মধ্যেই ভুল ছিল। অথচ একাত্তর ছিল একটা বড়সড় ঐতিহাসিক অর্জন। যার সম্ভাবনা ছিল অপরিসীম। কিন্তু রাজনৈতিক ঐক্যের উপলব্ধিতে অন্ধ হয়ে বিশ্বাস, দৃষ্টি এবং চিন্তার পার্থক্য ও বৈচিত্র্যকে আমরা অস্বীকার করে ভুল করেছিলাম। দরকার ছিল আরও গভীর পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে বিশ্বাস, দৃষ্টি ও চিন্তার পার্থক্য নিরসনের ক্ষেত্রগুলো অন্বেষণ করা। কিন্তু সেই কঠিন কাজ আমরা করিনি। করা দরকার সেই উপলব্ধিও আমাদের ছিল বলে মনে হয় না। এখন কতটা আছে সেটাও প্রশ্নের সম্মুখীন। দ্বিতীয় ট্র্যাজেডি হচ্ছে ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতিবোধের ঐক্যের জায়গা থেকে আমরা ইসলাম প্রশ্নের মোকাবিলা করিনি। কিন্তু এখন ভুলের মাশুল শোধরানোর বিপজ্জনক ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে আমাদের ইসলাম প্রশ্ন মোকাবিলা করতে হচ্ছে। মোকাবিলা করবার সেই সামর্থ ও সক্ষমতা আমাদের আদৌ আছে কিনা এখন আমার ঘোরতর সন্দেহ তৈরি হয়েছে। এখন ‘বঙ্গে জিহাদের পুনর্জাগরণ’-এর পরিপ্রেক্ষিতে ও আইসিসের হুমকির মুখে আমাদের ইসলাম প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। খুব দেরি হয়ে গেল, তাই নয় কি? একটা সময় ছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর ইসলাম নিয়ে আলোচনা বাংলাদেশে একদমই অপ্রাসঙ্গিক মনে করা হতো। দাবি করা হতো, ইসলাম প্রশ্ন আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মীমাংসা করে ফেলেছি। আমরা বাঙালি। আমাদের জাতিসত্তা ও আত্মপরিচয়ের মধ্যে ইসলামের কোনো ভূমিকা নেই। ইসলাম আমাদের ধর্ম হতে পারে, কিন্তু ধর্ম একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইসলামকে অতএব সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে বিদায় নিতে হবে। ইসলাম থাকতে পারে, তবে সেটা থাকবে একান্তই ব্যক্তিগত ধর্মচর্চার ক্ষেত্র হিসেবে। ব্যস। এটাই আমাদের ধর্ম নিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বাঙালি হবার একমাত্র তরিকা। কিন্তু ধর্ম নিছকই ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ব্যাপার নয়। ধর্মের ইতিহাস আছে, তার সমাজতত্ত্ব আছে। ধর্ম সাড়ে ষোল আনা ইহলৌকিক ব্যাপার। ধর্ম মানুষের সমাজ ও ইতিহাসের বাইরে আসমানি কিছু নয়। ধর্মের মধ্য দিয়ে মানুষ চিন্তা করেছে, অতএব ধর্মতত্ত্বের মধ্য দিয়ে মানুষের চিন্তারই বিবর্তন ও বিকাশ ঘটেছে। যেকোনো ধর্মেরই কিছু মৌলিক দার্শনিক প্রস্তাবনা আছে। বিশ্বাসের নিশ্চিত নিশ্চয়বোধ থেকে ভিন্নভাবে সেই সকল প্রস্তাবনা নিয়ে দার্শনিক পর্যালোচনা সম্ভব। পাশ্চাত্যে ধর্ম আর দর্শনের ফারাক সাম্প্রতিক ব্যাপার। বুদ্ধি ও যুক্তির জায়গা থেকে নীতিবিদ্যার ভিত্তি হিসেবেও ধর্ম ভূমিকা রাখে। তাহলে নীতি-নৈতিকতার জায়গা থেকে ধর্মের বিচার দরকার। নানান দিক থেকে ধর্মের বিচার জরুরি। কিন্তু একাত্তরের পর আমরা ধরে নিয়েছি, এসবের দরকার নেই। এর মূল্য খুবই কঠিনভাবে সুদে আসলে এখন আমরা দিতে শুরু করেছি। কিন্তু মাশুল দিতে গিয়ে আধুনিকতা ও আত্মপরিচয়ের রাজনীতির মধ্যে খাবি খেতে খেতে আমরা যেন নিশ্চিহ্ন হয়ে না যাই। লেখক : কবি ও প্রাবন্ধিক পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 24 July 2016, Sunday সংঘাতের চরিত্র যাই হোক, দ্বন্দ্ব-সংঘাত প্রতিটি সমাজেই থাকে। দ্বন্দ্ব-সংঘাতের চরিত্র বোঝা এবং সমাজ কীভাবে তা সমাধান করছে, কিংবা করতে ব্যর্থ হচ্ছে তার দ্বারা একটি সমাজের টিকে থাকা-না থাকা সম্পর্কে আগাম অনেক কিছু অনুমান করা যায়। এই উপমহাদেশে আমরা ধর্মের প্রশ্ন মীমাংসা করতে পারিনি। এই অমীমাংসা আগামীতে আসন্ন বড়সড় রাজনৈতিক তুফানকে প্রলয়ংকরী করে তোলে কিনা সেটাই এখন বিরাট প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে। আধুনিক রাষ্ট্রের সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক পুরো দক্ষিণ এশিয়াতেই অমীমাংসিত বিষয় হয়ে রয়েছে। রাষ্ট্রকে ধর্মনিরপেক্ষ রাখার মধ্য দিয়ে আধুনিক রাষ্ট্র তার সমাধান করতে পেরেছে বলে যে দাবি আমরা এতকাল শুনেছি, সাম্প্রতিককালে ইউরোপে ও আমেরিকায় পরিচয়কেন্দ্রিক রাজনীতির শক্তি বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে তার মৃত্যুঘণ্টা আগের চেয়ে অনেক স্পষ্ট হয়ে যাচ্ছে। সেক্ষেত্রে ধর্মীয় পরিচয় গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। ধর্মীয় পরিচয় রাজনীতির নির্ণায়ক হয়ে ওঠার মধ্য দিয়ে আধুনিক রাষ্ট্র সব ধরনের আত্মপরিচয়ের বাইরে বা ঊর্ধ্বে যে নিরপেক্ষ ‘রাজনৈতিক পরিসর’ রক্ষা করার দায় নিতে পারে বলে দাবি করা হতো, সেখানে ঘোরতর সন্দেহ দেখা দিয়েছে। বলা হয়, আধুনিক রাষ্ট্র ধর্ম কিংবা ধর্মীয় পরিচয়ের প্রশ্নে উদাসীন বা নিরপেক্ষ। এই ঔদাসীন্য ও নিরপেক্ষতার মধ্যেই আধুনিক রাষ্ট্রের অগ্রসরতা ও শক্তি নিহিত। কিন্তু ভাষা, জাতি চেতনা, সভ্যতা-অসভ্যতার ধারণা ইত্যাদি ক্ষেত্রে রাষ্ট্র নিরপেক্ষ নয়। ধর্মের সঙ্গে রাষ্ট্রের অমীমাংসা প্রকটভাবে ধরা পড়ে যখন রাষ্ট্রের নামে যুদ্ধ, জাতীয়তাবাদ বা জাতির পরিচয় রক্ষার জন্য প্রতিপক্ষ হত্যা বৈধ বলে গণ্য করা হয়। কিন্তু এখন আধুনিকতা ও ধর্মনিরপেক্ষতার কালে ধর্মের নামে যুদ্ধ বা ধর্মের কারণে হত্যাকে আমরা বৈধ মনে করি না। ধর্মের নামে হত্যা অন্যায়, এটা মেনে নিতে অসুবিধা নাই। কিন্তু রাষ্ট্রের নামে কিংবা জাতির নামে হত্যা বৈধ হবে কেন? যদি ধর্মীয় পরিচয় থেকে মুক্ত হওয়ার মধ্য দিয়ে বৃহত্তর সমাজ ও রাজনৈতিক পরিসর গড়ে তোলার প্রতিশ্র“তি আমাদের কাছে আদরণীয় হয়, তাহলে জাতি বা রাষ্ট্রের পরিচয়ে পরিচিত হওয়ার রাজনীতিকে আমরা অগ্রসর রাজনৈতিক চিন্তা বলব কেন? প্রশ্নগুলো সমস্যার গভীরতা বোঝার জন্য তুলছি। বলাবাহুল্য, পত্রিকার উপসম্পাদকীয় পাতায় এ বিশাল প্রশ্নের সংক্ষিপ্ত উত্তর অসম্ভব। সে চেষ্টা করব না। তবে হলি আর্টিজানের হত্যাকাণ্ডের পর যারা একে ধর্মের ফল হিসেবে দেখছেন ও নিন্দার বৃষ্টি ছড়াতে শুরু করেছেন, তাদের বলি, ধর্মের হত্যা যেমন নিন্দনীয় তেমনি জাতি বা রাষ্ট্রের নামে হত্যাও নিন্দনীয়। দুটোই আসলে আত্মপরিচয়ের রাজনীতি মাত্র। ধর্মবোধের আর জাতিবোধের চেতনার মধ্যে ফারাক নেই। দুই আমরা ডোনাল্ড ট্রাম্প নিয়ে হাসাহাসি করতে পারি। কিন্তু তিনি তামাশার বস্তু নন, তিনি রিপাবলিকান দলের পক্ষ থেকে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আগামী নির্বাচনে প্রতিদ্বর্ন্দ্বী। তার জনপ্রিয়তার ভিত্তি ইসলাম ও মুসলমান বিদ্বেষ। তিনি তার খ্রিস্টীয় পরিচয়কে এর বিপরীতেই হাজির করেন। তিনি সবল এবং মার্কিন জাতির সভ্যতা ও মহিমা প্রতিষ্ঠা করার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট হতে চান। ভালো কথা। তিনি আমেরিকায় কোনো মুসলমানকে আর ঢুকতে দিতে নারাজ। ইসলাম ও মুসলমান বিদ্বেষের মধ্য দিয়ে তিনি পাশ্চাত্য সভ্যতা এবং তার খ্রিস্টীয় পরিচয়কেই সামনে নিয়ে এসেছেন। ইউরোপ-আমেরিকা সর্বত্রই আত্মপরিচয়ের রাজনীতি প্রবলভাবে ফিরে এসেছে। দার্শনিক ব্রুনো লাতুর সম্প্রতি তার এক সাক্ষাৎকারে হিন্দু ধর্ম ও হিন্দু পরিচয় নিয়ে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলেছেন। ধর্ম পরিচয়ের রাজনীতি ভারতের একার সমস্যা নয়, তবে ধর্ম পরিচয়ের রাজনীতি ভারতে যে প্রকট রূপ নিয়ে তথাকথিত আধুনিক সেক্যুলার রাষ্ট্র ও পার্লামেন্টারি রাজনীতির পরিমণ্ডলে প্রকটভাবে হাজির, তার তুলনা একমাত্র ভারত নিজেই। বিজেপি ও তার দর্শন হিন্দুত্ববাদের মধ্য দিয়ে প্রকটভাবে প্রচারিত ও প্রতিষ্ঠিত। তবে হিন্দুত্ববাদে বিজেপির একচেটিয়াত্ব নাই। এটা ভারতীয় রাজনীতির ধমনীর মধ্য দিয়ে প্রবাহিত, নইলে নরেন্দ্র মোদি প্রধানমন্ত্রী হতে পারতেন না। আধুনিক ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র ও রাজনীতির এই ধর্মীয় রূপান্তর একালের সবচেয়ে ইন্টারেস্টিং ঘটনা। ব্রুনো লাতুরের জিজ্ঞাসা অন্যত্র, যা আমাকে ভাবিয়েছে। হিন্দু কখনোই পাশ্চাত্য অর্থে ‘রিলিজিয়ন’ ছিল না। যদিও খ্রিস্টধর্মকে ধর্মের সার্বজনীন রূপ গণ্য করে অন্যান্য জনগোষ্ঠীর ধর্মকে আমরা বুঝে থাকি। লাতুর বলছেন, এটা বেশ অবাক কাণ্ড এহেন ‘হিন্দু’ ব্যাপারটা কীভাবে ইউরোপীয় রাজনৈতিক ধর্মতত্ত্বের অংশ হয়ে গেল? যা কোনো কালে ধর্ম ছিল না, তা ইউরোপীয় খ্রিস্টীয় ঐতিহ্যের গহ্বরে পড়ে খ্রিস্টীয় ধর্ম ও ইসলামের মতো ইউরোপীয় ঐতিহ্যের মধ্যে হজম হয়ে গেল। আধুনিক রাষ্ট্রের সুবাদে যে রাজনৈতিক ধর্মতত্ত্বের প্রতিষ্ঠা, তার মধ্যে অন্যান্য ধর্মের মতো হিন্দুও সেঁধিয়ে গেল! বিজেপি যত বেশি হিন্দু ধর্ম বা হিন্দুত্বকে রাজনীতিতে টেনে আনবে, ততটাই সে আর ভারতীয় নয়। কারণ তার ধর্মের ধারণা ভারতীয় ঐতিহ্যের বাইরের জিনিস, বাইরে থেকে আমদানি করা ব্যাপার। মোদি হিন্দু ধর্মের প্রতিনিধি কি? হিন্দুত্ববাদী আত্মপরিচয়ের বা আধুনিকতার প্রতিনিধি (দেখুন, Interview: Philosopher Bruno Latour on Challenges of Identity Politics in India, in the WIRE, 16-07-2016)। আধুনিক রাষ্ট্র কীভাবে ধর্মের চরিত্রে রূপান্তর ঘটায় সে বিষয়ে আমাদের হুঁশ নাই বললেই চলে। ধর্মের চরিত্রের মধ্যে আত্মপরিচয় তৈরির সুযোগ কতটা রয়েছে সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ তর্ক। ইসলাম ধর্ম পালন করা, আর মুসলিম পরিচয় নিয়ে নিজেকে একটি পৃথক রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী আর ‘জাতি’ গণ্য করা- দুটো সম্পূর্ণ ভিন্ন ব্যাপার। মুসলমানদের অবশ্যই ন্যায়সঙ্গত ক্ষোভ রয়েছে। ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদী যুগে মুসলমান হিসেবে নিপীড়িত-শোষিত হওয়ার ইতিহাস এবং আধুনিক রাষ্ট্র ও বিশ্বব্যবস্থার মধ্যে তার সমাধান বা মীমাংসার চেষ্টাকে আমরা সেভাবেই বুঝব। কিন্তু ধর্ম হিসেবে মানবেতিহাসে ইসলামের প্রস্তাবনা ও সম্ভাবনাকে কি সেভাবে বোঝা যাবে? এটাই একালের গুরুত্বপূর্ণ জিজ্ঞাসা। সব ধর্ম এবং ধর্ম পরিচয়ভিত্তিক রাজনীতির ফারাকের মধ্যে মানুষের চিন্তার অস্পষ্ট ও অপরিচ্ছন্ন দিকগুলো সম্প্রতি আগের চেয়ে অনেক বেশি দৃশ্যমান হচ্ছে। কথাগুলো বলছি কারণ, ধর্মের রাজনীতি নিয়ে যেসব আলাপ-আলোচনা আমরা দেখি তার সঙ্গে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ধর্মের কোনো সম্বন্ধ নাই। সেটা আসলে ধর্মভিত্তিক আত্মপরিচয় এবং আধুনিক সমাজ ও আধুনিক রাষ্ট্রের সমস্যা। অর্থাৎ আধুনিকতা ও আত্মপরিচয়ের রাজনীতির প্রবলেম। এ দিকটি স্পষ্ট ও পরিচ্ছন্ন করা গেলে হয়তো বাংলাদেশে ধর্ম ও রাজনীতির সম্পর্ক নিয়ে যেসব (কু)তর্ক চলে তার অবসান হবে এবং আমরা বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতাকে আরও বিচক্ষণভাবে মোকাবেলার জন্য প্রস্তুত হতে পারব। এটা সত্যি যে, ধর্মের সঙ্গে সমাজ, ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি, ধর্মের সঙ্গে সংস্কৃতি এবং সর্বোপরি ধর্মের সঙ্গে চিন্তার সম্পর্ক আমরা মীমাংসা করতে পারিনি। কিন্তু সেটা আমাদের অক্ষমতা নয়, বরং তা আধুনিকতা ও আধুনিক রাষ্ট্রের অক্ষমতা, যা ক্রমশ প্রকট হয়ে বিশ্বব্যাপী দৃশ্যমান হয়ে উঠছে। আধুনিকতা ও আধুনিক রাষ্ট্রের পর্যালোচনার মধ্য দিয়েই সেই মীমাংসার পথে আমাদের অগ্রসর হতে হবে। তবে শুরুতেই কিছু ফালতু তর্ক ও প্রপাগান্ডা পরিহার করা জরুরি। যেমন ধর্ম মাত্রই সহিংসতার জন্ম দেয়। হলি আর্টিজানের হত্যাকাণ্ড এই কুতর্ককে উসকে দেবে। এই ফালতু বক্তব্যের পক্ষে কোনো বাস্তব তথ্য নাই। এই দাবির অসারতা প্রমাণের জন্য সেই পুরনো যুক্তিই যথেষ্ট যে দু’ দুটো বিশ্বযুদ্ধে লাখ লাখ মানুষ হত্যা করা হয়েছে, লাখ লাখ মানুষ পঙ্গু হয়েছে। কিন্তু এই দুটো যুদ্ধ ধর্মযুদ্ধ ছিল না। দুটো যুদ্ধই ছিল আধুনিক ইউরোপীয় রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে আধুনিক বিশ্বযুদ্ধ। হত্যা করা হয়েছে জাতির নামে, রাষ্ট্রের নামে। হলি আর্টিজানের হত্যাকাণ্ডই শুধু নৃশংস নয়, পুলিশি নির্যাতন, পুলিশি হেফাজতে মৃত্যু, গুম, খুন, রিমান্ডের নির্দয়-নিষ্ঠুর অত্যাচারের কথাও ভেবে দেখতে হবে। আধুনিক গণমাধ্যম আধুনিক রাষ্ট্রের স্বার্থে আধুনিক রাষ্ট্রের নৃশংসতাকে নিয়মিতভাবেই আড়াল করে। নজরের বাইরে নিয়ে যায়। তিন রাজনীতির এই অমীমাংসিত উপত্যকা আপাতত আমরা কীভাবে মোকাবেলা করব? আমরা কেউ বিশ্বাসী হতে পারি, হতে পারি ঈমান-আকিদার ক্ষেত্রে কঠোর কিংবা শিথিল, হতে পারি নামকাওয়াস্তে মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান কিংবা নাস্তিক, কিংবা ধর্মনিরপেক্ষ, ইত্যাদি। হয়তো এমনও আমরা আছি যাদের কাছে জীবনের কোনো কিছুরই কোনো মানে নাই। মানুষের মানে হারিয়ে ফেলার দুর্দশা পাশ্চাত্য দর্শনে ‘নিহিলজম’ নামে পরিচিত। তবে তার নানান রূপ আছে। জীবনের কোনো মানে থাকতে হবে তারও বা কী কথা আছে? জীবনের কোনো মানে খোঁজা বা অর্থ নির্ণয়ের পরিশ্রম বাদ দিয়ে ওরাং ওটাং হয়ে ডালে ডালে ঝুলতে ঝুলতে নিশ্চিন্তে জীবন কাটিয়ে দেয়া মানুষের পক্ষে অসম্ভব নয় মোটেও। সত্যি যে নির্ভাবনায় মানুষ একটি ভোগী জীবন কাটিয়ে দিতে পারে। ‘মানুষ’ নামক একাট্টা জীবের যে বিমূর্ত ধারণা আমরা মাথায় বহন করি, হয়তো সেখানেই গোড়ার গলদ। সে যাই হোক, আমরা ধরে নিতে পারি মানুষ বিচিত্র। আর এই বৈচিত্র্য নিয়েই সমাজ। আগেই তৈরি কোনো একটি ছাঁচে ফেলে মানুষকে বিচার করতে গেলেই সমাজে বিভক্তি ও হানাহানির শর্ত তৈরি হয়। আমার বিশ্বাস অন্য সবারই বিশ্বাস হতে হবে, আমার উপলব্ধি সবারই উপলব্ধি হতে হবে, আমার সত্যই একমাত্র সত্য বলে সবাইকে মেনে নিতে হবে- এই আধুনিক অহংকার সমাজে ও রাজনীতিতে হিংসা ও হানাহানির পরিস্থিতি তৈরি করে। জীবসত্তার বিচার করলে জীবজন্তু ও প্রাণীজগৎ থেকে মানুষ আলাদা কিছু নয়। কিন্তু যখনই মানুষ তার জীবপ্রকৃতির সীমা অতিক্রম করার চেষ্টা করে, তখন তার মধ্যে কিছু অতিরিক্ত স্বভাব প্রকাশ পেতে থাকে এবং জীবজগতের সঙ্গে তার পার্থক্যের সূচনা ঘটাও শুরু হয়। এ অর্থেই দাবি করা যায়, মানুষের স্বভাব সে কারণে জীবের স্বভাব নয়, নিজের প্রবৃত্তিগত হিংস্রতাকে মোকাবেলার সুযোগ মানুষ গ্রহণ করতে পারে। এটা আমরা অনুমান করতে পারি। অতিরিক্ত স্বভাবের কারণেই যা জৈবিক, দৃশ্যমান কিংবা ইন্দ্রিয়প্রত্যক্ষ, তার বাইরের বিষয় নিয়ে মানুষ ভাবে, চিন্তা করে এবং নিজের স্বভাবকে জীবপ্রকৃতি থেকে আলাদা ভাবতে ধীরে ধীরে সক্ষম হয়। তার নিজের সম্পর্কে যা ধারণা বা অনুমান সে করে, সেই মোতাবেক তার স্বভাবেও মানুষ পরিবর্তন আনতে সক্ষম। জীবপ্রকৃতি লৌকিক; কিন্তু যাকে আমরা মানুষের প্রকৃতি বা মানুষের স্বভাব বলে বোঝার চেষ্টা করি তাকে লৌকিকতার সীমার মধ্যে নির্দিষ্ট করা, শনাক্ত করা ও বিচার করা কঠিন। রহস্য মনে হলে এ কারণে বলা যায়, মানুষ অলৌকিক; কিন্তু সেটা শর্তসাপেক্ষে। অর্থাৎ লৌকিকতা ও অলৌকিকতার সম্বন্ধ বিচারের মধ্য দিয়েই মানুষের গল্প খানিকটা বলা যায়। মানুষকে কিছুটা চেনাও হয়তো যায়। আর, মানুষ তার গল্প মানুষের ইতিহাস হিসেবে পৃথিবীতে লিখে যেতে পারে। মানুষ তার কল্পনা ও ইচ্ছা অনুযায়ী ইতিহাস হতে পারে। তাহলে বিশ্বাস ও মতের পার্থক্য একটি সমাজ কীভাবে মীমাংসা করে তার ওপর মূলত একটি সমাজের শক্তি নির্ভর করে। একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের সময় ঐতিহাসিক বাস্তবতার কারণে ভাষা ও জাতিবোধের মধ্যে আমরা নিজেদের রাজনৈতিক ঐক্যের ক্ষেত্র খুঁজে পেয়েছিলাম; কিন্তু সেটা বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে বিশ্বাস, দৃষ্টি ও চিন্তার পার্থক্যের নিরাকরণ ঘটিয়ে দিতে পেরেছে এই অনুমান তখন যেমন মারাত্মক ও বিপজ্জনক ভুল ছিল সেটা এখন আরও ভয়াবহ ভুল হিসেবে হাজির হয়েছে। জাতিবোধ বা জাতীয়তাবোধকে শাশ্বত গণ্য করার মধ্যেই ভুল ছিল। অথচ একাত্তর ছিল একটা বড়সড় ঐতিহাসিক অর্জন। যার সম্ভাবনা ছিল অপরিসীম; কিন্তু রাজনৈতিক ঐক্যের উপলব্ধিতে অন্ধ হয়ে বিশ্বাস, দৃষ্টি এবং চিন্তার পার্থক্য ও বৈচিত্র্যকে আমরা অস্বীকার করে ভুল করেছিলাম। দরকার ছিল আরও গভীর পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে বিশ্বাস, দৃষ্টি ও চিন্তার পার্থক্য নিরসনের ক্ষেত্রগুলো অন্বেষণ করা। কিন্তু সেই কঠিন কাজ আমরা করিনি। করা দরকার সেই উপলব্ধিও আমাদের ছিল বলে মনে হয় না। এখন কতটা আছে সেটাও প্রশ্নের সম্মুখীন। দ্বিতীয় ট্রাজেডি হচ্ছে ভাষা, সংস্কৃতি ও জাতিবোধের ঐক্যবোধের জায়গা থেকে আমরা ইসলাম প্রশ্নের মোকাবেলা করিনি। কিন্তু এখন ভুলের মাশুল শোধরানোর বিপজ্জনক ক্ষেত্রে দাঁড়িয়ে আমাদের ইসলাম প্রশ্ন মোকাবেলা করতে হচ্ছে। মোকাবেলা করার সেই সামর্থ্য ও সক্ষমতা আমাদের আদৌ আছে কিনা, আমার সন্দেহ আছে। একটা সময় ছিল একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের পর ইসলাম নিয়ে আলোচনা বাংলাদেশে একদমই অপ্রাসঙ্গিক মনে করা হতো। দাবি করা হতো, ইসলাম প্রশ্ন আমরা একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে মীমাংসা করে ফেলেছি। আমরা বাঙালি। আমাদের জাতিসত্তা ও আত্মপরিচয়ের মধ্যে ইসলামের কোনো ভূমিকা নাই। ইসলাম আমাদের ধর্ম হতে পারে; কিন্তু ধর্ম একান্তই ব্যক্তিগত ব্যাপার। ইসলামকে অতএব সামাজিক, সাংস্কৃতিক বা রাজনৈতিক ক্ষেত্র থেকে বিদায় নিতে হবে। ইসলাম থাকতে পারে, তবে সেটা থাকবে একান্তই ব্যক্তিগত ধর্মচর্চার ক্ষেত্র হিসেবে। ব্যস। এটাই আমাদের ধর্মনিরপেক্ষ অসাম্প্রদায়িক বাঙালি হওয়ার একমাত্র তরিকা। কিন্তু ধর্ম নিছকই ব্যক্তিগত বিশ্বাসের ব্যাপার নয়। ধর্মের ইতিহাস আছে, তার সমাজতত্ত্ব আছে। ধর্ম সাড়ে ষোল আনা ইহলৌকিক ব্যাপার। ধর্ম মানুষের সমাজ ও ইতিহাসের বাইরে আসমানি কিছু নয়। ধর্মের মধ্য দিয়ে মানুষ চিন্তা করেছে, অতএব ধর্মতত্ত্বের মধ্য দিয়ে মানুষের চিন্তারই বিবর্তন ও বিকাশ ঘটেছে। যে কোনো ধর্মেরই কিছু মৌলিক দার্শনিক প্রস্তাবনা আছে। বিশ্বাসের নিশ্চিত নিশ্চয়বোধ থেকে ভিন্নভাবে সেসব প্রস্তাবনা নিয়ে দার্শনিক পর্যালোচনা সম্ভব। পাশ্চাত্যে ধর্ম আর দর্শনের ফারাক সাম্প্রতিক ব্যাপার। বুদ্ধি ও যুক্তির জায়গা থেকে নীতিবিদ্যার ভিত্তি হিসেবেও ধর্ম ভূমিকা রাখে। তাহলে নীতি-নৈতিকতার জায়গা থেকে ধর্মের বিচার দরকার। নানান দিক থেকে ধর্মের বিচার জরুরি। কিন্তু একাত্তরের পর আমরা ধরে নিয়েছি, এসবের দরকার নাই। এর মূল্য খুবই কঠিনভাবে সুদে আসলে এখন আমরা দিতে শুরু করেছি। কিন্তু মাশুল দিতে গিয়ে আধুনিকতা ও আত্মপরিচয়ের রাজনীতির মধ্যে খাবি খেতে খেতে আমরা যেন নিশ্চিহ্ন হয়ে না যাই, এটাই এখনকার কাতর প্রত্যাশা। উৎসঃ যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 05 May 2016, Thursday আমি বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন নিয়ে উদ্বিগ্ন। সেটা রাষ্ট্র করুক, কিম্বা কোন কোম্পানি বা বেসরকারি প্রতিষ্ঠান- নিজের বায়োমেট্রিক ডাটা রাষ্ট্র কিম্বা বেসরকারি ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার বিপদ রয়েছে। দুইয়ের মধ্যে ফারাক আছে বটে, কিন্তু অবস্থাভেদে যেকোনো প্রকার ডিজিটাল নজরদারি নাগরিকদের জন্য ভয়ঙ্কর হতে পারে। মোবাইল কোম্পানি বিশেষত বিদেশী যদি সিম নিবন্ধনের নামে বাংলাদেশের নাগরিকদের বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ তৈরি করে, তাহলে তা জাতীয় প্রতিরক্ষার দিক থেকে বিপজ্জনক। মেনে নেওয়া যায় না। বাংলাদেশের নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র তৈয়ার করে রাষ্ট্র নাগরিকদের ওপর নজরদারির যে ডিজিটাল ব্যবস্থা প্রচলন করে তার বিরোধিতা কেন করা উচিত সেটা ব্যক্তির নিজের ‘প্রাইভেসি’ বা অনাকাঙ্ক্ষিত উপদ্রব বা নজরদারি থেকে মুক্ত থাকার অধিকারের সঙ্গে যুক্ত। সে কারণে রাষ্ট্র যখন সেটা করে তখন যুক্তিসঙ্গত আইনের অধীনে গণতান্ত্রিক বিধান অনুযায়ী করছে বলে দাবি করে বটে, কিন্তু ব্যক্তির ওপর রাষ্ট্রের খবরদারি, নজরদারি ও নিয়ন্ত্রণ বাড়ে বৈ কমে না। বিষয়টি ডিজিটাল যুগে আধুনিক রাষ্ট্রের চরিত্র এবং একালে টেকনোলজির বিবর্তনের পর্যালোচনা করে বুঝতে হবে। সারা দুনিয়ার মানুষের ওপর অল্প কিছু ক্ষমতাবান মানুষ ও কর্পোরেশানের কৃৎকৌশলগত নিয়ন্ত্রণের সমূহ সুযোগ ডিজিটাল বিপ্লব এনে দিয়েছে। এ ব্যাপারে আমাদের বিশেষ হুঁশ নাই। তবুও তর্ক আছে যে গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে আইনি সুরক্ষার কিছু সুযোগ থাকে। অন্য দেশের ভিসা নেবার সময় বা ভিনদেশে প্রবেশের মুখে সীমান্তে বা এয়ারপোর্টের ইমিগ্রেশানের কাছে আমরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে বাধ্য থাকি। রাষ্ট্রের আদৌ ডিজিটাল নজরদারির এখতিয়ার আছে কি না তা নিয়ে বিস্তর তর্ক আছে। ইতালির দার্শনিক আগামবেন একবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াবার আমন্ত্রণ পেয়েছিলেন। কিন্তু তিনি কিছুতেই ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেবেন না এবং নিজেকে ডিজিটাল নজরদারির অধীন করার ঘোরবিরোধী অবস্থান নিয়েছিলেন। শেষমেশ তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাননি, এবং নিউ ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির কোর্স বাতিল করেছেন। তাহলে বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের বিরুদ্ধে শক্তিশালী তাত্ত্বিক কিম্বা দার্শনিক যুক্তি রয়েছে। এ বিষয়ে আগামবেনের যুক্তি আমাদের শোনা দরকার। তেমনি আরেকজন ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকোকে নিয়েও আমরা কথা বলব। ‘জনগণ’কে নজরদারি ও শাস্তির ব্যবস্থার মধ্য দিয়ে আধুনিক রাষ্ট্র কিভাবে ‘শৃংখলাধীন’ (বা শৃংখলিত) করে সেই দিক নিয়েও খানিক আলোচনা করব। আধুনিক রাষ্ট্রের চরিত্র পর্যালোচনা এবং এ কালের রাজনৈতিক কর্তব্যগুলো সুনির্দিষ্ট ভাবে বোঝার জন্য বায়োমেট্রিক নিবন্ধন পর্যালোচনা খুবই জরুরি। এই লেখাটির উদ্দেশ্য এটাই। তাহলে ফিঙ্গারপ্রিন্ট দেওয়া কিম্বা নিজেকে অন্য কোন বায়োমেট্রিক পদ্ধতির নজরদারির অধীনস্থ করাকে স্বাভাবিক ও যুক্তিসঙ্গত মনে করা মারাত্মক ভুল। এতে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবার কিম্বা তথাকথিত অপরাধ দমনের সম্পর্ক অতি ক্ষীণ। সমাজব্যবস্থাই যদি অপরাধ সংঘটনের কারণ হয়, তাহলে সমাজের সংস্কার বা রূপান্তরের কথা না বলে অপরাধকে টেকনোলজি দিয়ে দমন অবাস্তব। বর্তমান বিশ্ব অসম; পরদেশ লুণ্ঠনসহ যুদ্ধবিগ্রহ সহিংসতা আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার নিত্যদিনের কারবার; প্যালেস্টাইন, ইরাক, লিবিয়া, সিরিয়া ইত্যাদি দেশ থেকে সাধারণ মানুষকে উৎখাত করা হয়েছে, তাদের দেশান্তরী ও অভিবাসী জীবনে বাধ্য করা হয়েছে; অন্যায় মোচনের পরিবর্তে ক্রমাগত অন্যায় ও অবিচারকে প্রশয় দেয়া হচ্ছে। তাহলে সন্ত্রাস দমনের নামে আরো অধিক সন্ত্রাস, যুদ্ধ ও সহিংসতার বিস্তার ও বিশ্বব্যাপী যুদ্ধকৌশলের অংশ হিসাবেই বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ক্ষমতাসীনদের জন্য জরুরি হয়ে পড়েছে। সমাজে যখন ধনি গরিবের ব্যবধান বাড়ে, বিশ্বে যখন অল্প কিছু লোক অধিকাংশের সম্পদ কুক্ষিগত করে, রাষ্ট্র যখন বাজারব্যবস্থার মহিমার নামে মানুষের জীবন ও জীবিকার আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রগুলো সঙ্কুচিত করে সেখানে রাষ্ট্র ও বহুজাতিক কোম্পানির বিরুদ্ধে নানান প্রতিরোধ ও বিদ্রোহ ঘটবেই। ডিজিটাল নজরদারি সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক অব্যবস্থা ও কুব্যবস্থার সমাধান নয়। তাহলে সমাজ, অর্থনীতি, সংস্কৃতি ও রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্নভাবে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন নিয়ে তর্ক করলে ডিজিটাল যুগে নানাবিধ গোয়েন্দাগিরি ও নজরদারির ব্যাখ্যা করা যাবে না। সে কারণে এখানে আমরা সাধারণ ভাবে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন ও আধুনিক রাষ্ট্রের নজরদারি নিয়েই কিছু প্রাথমিক আলোচনা শুরু করতে চাইছি, কিন্তু সেটাও দুই এক কিস্তিতে শেষ করা সম্ভব না। বাংলাদেশে এই তর্কটা মোবাইল কোম্পানির সিম নিবন্ধনকে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে, ফলে সেই বিষয়ে শুরুতে কিছু প্রাথমিক আলোচনা করে নেওয়া যাক। বিদেশী মোবাইল কোম্পানির সিম নিবন্ধন বিপজ্জনক মোবাইল কোম্পানি যাদের অধিকাংশই বিদেশী তাদের কাছে আমাদের ব্যক্তিগত বায়োমেট্রিক তথ্য তুলে দেবার কোনই যুক্তি নাই। সে কারণে যারা এর বিরোধিতা করছেন আমি তাদের সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করেছি অনেক আগেই। এপ্রিলে সিম নিবন্ধনের সময়সীমা অতিক্রম হয়ে যাবার আগে ফেসবুকে সেটা প্রকাশও করেছি। নিবন্ধনের সময় সীমা মে মাসের জন্য আবার বাড়ানো হয়েছে। অনেকেই সিম হারাবার ভয়ে এবং মোবাইল কোম্পানির প্রচারণার চাপে নিবন্ধন করেছেন। কিন্তু তারা নিদেনপক্ষে তাদের নিজেদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে পারে এ ধরনের কোন যুক্তিসঙ্গত আইন না থাকার পরেও মোবাইল কোম্পানির কাছে তাদের আঙুলের ছাপ দিয়ে নিজেদের নিরাপত্তার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিয়েছেন। সিমের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের জন্য কোনো আইন নাই। নাগরিকদের ব্যক্তিগত তথ্য সংগ্রহ ব্যক্তির নিজের ‘প্রাইভেসি’ বা অনাকাঙ্ক্ষিত উপদ্রব বা নজরদারি থেকে মুক্ত থাকার অধিকারের সঙ্গে যুক্ত। বিদেশী মোবাইল কোম্পানিগুলোর কাছে সিম ব্যবহারকারী বাংলাদেশের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন কেন জরুরি হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় সেটাই বিশাল একটি প্রশ্ন। নাগরিকদের বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ তৈয়ারি ও সংরক্ষণ সরাসরি জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত। তাহলে মোবাইল কোম্পানির বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধন জাতীয় নিরাপত্তার জন্যই বিপজ্জনক। মোবাইল কোম্পানিগুলো ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান, তদুপরি অধিকাংশই বিদেশী। তারা নাগরিকদের বায়োমেট্রিক তথ্য কিভাবে ব্যবহার করবে, কাকে দেবে, কিম্বা এই ডাটাবেইজের ব্যবসায়িক সম্ভাবনা কিভাবে কাজে লাগাবে এ ব্যাপারে কোনো আইন নাই। জাতীয় নিরাপত্তার সঙ্গে যুক্ত তথ্যভাণ্ডারের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবার কোনো আইন না থাকা একটি অতিশয় দুর্বল এবং পরাধীন রাষ্ট্রের লক্ষণ। নাগরিকদের ডাটাবেইজ সংবেদনশীল কিন্তু সেই ক্ষেত্রে জাতীয় প্রতিরক্ষার কোনো ব্যবস্থা নাই। তুমুল অরক্ষিত অবস্থায় নাগরিকদের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের নামে বিদেশী মোবাইল কোম্পানিগুলো মূলত বাংলাদেশের নাগরিকদের ওপর অতিশয় সংবেদনশীল ডাটাবেইজ তৈরি করছে। যা অবশ্যই অবিলম্বে প্রতিরোধ করা উচিত। শুধু সিম নিবন্ধন নয়, সাধারণভাবে রাষ্ট্রের বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের সঙ্গে নিরাপত্তা, নাগরিকদের ওপর রাষ্ট্র ও সরকারের নজরদারি বৃদ্ধির বিপদ, ব্যক্তিস্বাধীনতার ওপর হুমকি এবং সর্বোপরি আধুনিক কৃৎকৌশলের সুবিধা নিয়ে অল্প কিছু ব্যক্তির পুরা সমাজকে নিয়ন্ত্রণের ঝুঁকি ইত্যাদি নানা গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু জড়িত। এই ক্ষেত্রে বায়োমেট্রিক কায়দায় সিম নিবন্ধন সাধারণভাবে যে কোন প্রকার বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের অন্তর্গত বটে, তবে তাদের মধ্যে পার্থক্য আছে। পাসপোর্ট করতে, ভিসা পেতে এমনকি বিদেশী কোন রাষ্ট্রের সীমান্ত অতিক্রম করবার সময় আমরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিতে বাধ্য থাকি। রাষ্ট্র দাবি করে নিরাপত্তা নিশ্চিত করবার জন্য এটা তাদের এখতিয়ার। আধুনিক রাষ্ট্র তার সার্বভৌম ক্ষমতা বলে ব্যক্তিকে এই টেকনোলজিকাল নজরদারির অধীনস্থ করে। এই দিক থেকে বায়োমেট্রিক নিবন্ধন আধুনিক রাষ্ট্রের বিশেষ চরিত্রের লক্ষণ যা আমাদের আরো ঘনিষ্ঠ ভাবে পর্যালোচনা করে দেখা ও বোঝা উচিত। নয়-এগারোর পর বিশ্বব্যাপী ‘নিরাপত্তা’র ধারণা আমূল বদলে গিয়েছে। রাষ্ট্র, ক্ষমতাসীন সরকার কিম্বা রাষ্ট্রের নিরাপত্তাব্যবস্থার চোখে আমরা সকলেই রাতারাতি সম্ভাব্য সন্ত্রাসী বা অপরাধী হয়ে গিয়েছি। এগুলো খুবই মৌলিক ও গুণগত পরিবর্তন। বায়োমেট্রিক নিবন্ধনকে এই নতুন বাস্তবতা থেকে বিচ্ছিন্নভাবে দেখবার কোনো উপায় নাই। অন্য দিকে ডিজিটাল যুগে একটা নতুন ভূগোলের আবির্ভাব ঘটেছে আর অপরাধ ও সন্ত্রাস দমনের জন্য সেই ডিজিটাল জগৎকে নিয়ন্ত্রিত ও শৃংখলিত করবার জন্য রাষ্ট্রও সমানতালে বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। আমরা সামাজিক পরিচয় হারিয়ে টেকনোলজির সংকেত সংখ্যায় রূপান্তরিত হয়ে যাচ্ছি। খবর রাখছি না। এই সকল দিকে আমাদের নজর দ্রুত ফেরানো জরুরি হয়ে উঠেছে। বাংলাদেশে রাষ্ট্রের নজরদারির বিরুদ্ধে নয়, মোবাইল কোম্পানির বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের বিরুরেূ প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ শুরু হয়েছে। আগেই বলেছি, মোবাইল কোম্পানির বায়োমেট্রিক নিবন্ধন দরকার হোল কেন সেটা খুবই সন্দেহের বিষয়। ক্ষমতাসীনরা তার অনুমতি দিয়েছে কি? সিম নিবন্ধনের জন্য যেকোনো পরিচয়পত্রই যথেষ্ট। বড় জোর তারা জাতীয় পরিচয়পত্রের দাবি করতে পারে। কিন্তু ডিজিটাল বায়োমেট্রিক নিবন্ধনের অর্থ হচ্ছে তারা রাষ্ট্রের এখতিয়ারের বাইরে আলাদা ডাটাবেইজ তৈরি করতে চায় এবং বাংলাদেশে ডাটাবেইজের নিরাপত্তাসংক্রান্ত আইনের অভাবের সুযোগ নিয়ে এই ডাটাবেইজ দিয়ে আলাদা ব্যবসা করতে চায়। যে ডাটাবেইজ তারা তৈরি করছে তার স্বত্ব কার? সেই ডাটাবেইজের নিরাপত্তা কে দেবে?- এগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। অধিকাংশ মানুষ ডিজিটাল ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে নিবন্ধনের সম্ভাব্য বিপদ সম্পর্কে হুঁশিয়ার নন। এর মাধ্যমে তৈরি ডাটাবেইজ মুনাফাকারী ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলো বিদেশী রাষ্ট্রের গোয়েন্দাদের কাছেও হস্তান্তর করতে পারে। কিম্বা রাজনৈতিক হত্যাকাণ্ডে যে সকল শক্তি জড়িত তাদের হাতেও স্বেচ্ছায় কিম্বা অনিচ্ছায় কিম্বা টাকার বিনিময়ে তুলে দিতে পারে। এগুলো খুবই সম্ভব। কথা হোল, তারা কি পারে আর কি পারে না সে সম্পর্কে কোন আইন নাই। নাগরিকদের পক্ষে কোন রক্ষা কবচ নাই। বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের যারা বিরোধিতা করছেন, তারা ঠিকই বিপদ অনুধাবন করতে পেরেছেন। এখন আমাদের কাজ হচ্ছে ব্যাপারটিকে তথ্য ও বিশ্লেষণের মধ্য দিয়ে আরো স্পষ্ট করে তোলা। তাহলে শুরুতেই এই দিকটা আমরা মনে রাখব যে মোবাইল কোম্পানি, বিশেষত বিদেশী ও বহুজাতিক কর্পোরেশানের ডিজিটাল বায়োমেট্রিক নিবন্ধন আর রাষ্ট্রের নাগরিক নিবন্ধন এক কথা নয়। রাষ্ট্রের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন প্রবল বিতর্কের বিষয় হলেও বহুজাতিক ব্যবসায়ী কোম্পানির বায়োমেট্রিক নিবন্ধন খুবই সন্দেহের। এ কারণে যারা বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের বিরোধিতা করছেন আমাদের সামষ্টিক নিরাপত্তার জন্য তাদের প্রতিবাদকে খুবই তাৎপর্যপূর্ণ মনে করেছি এবং অকুণ্ঠচিত্তে সমর্থন করেছি। বায়োমেট্রিক নিবন্ধনকে কেন্দ্র করে অনেক কথা অনেকে বলছেন। অনেকের দাবি, এতে মোবাইল ফোন কেন্দ্রিক অপরাধ দমন করা যাবে, কিম্বা সহজ হবে। মোবাইল ফোনগুলো অপরাধ দমনের প্রতিষ্ঠান নয়। তারা ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠান। তারা মুনাফার জন্য বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ নিজেরা ব্যবহার করে নিজেরাই ক্রাইম করবে না তার গ্যারান্টি কী? বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ খুবই গুরুত্বপূর্ণ তথ্যভাণ্ডার। এই তথ্যভাণ্ডার গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগ ও মুনাফা কামানোর ক্ষেত্র। বিপজ্জনক হচ্ছে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ডাটাবেইজ কে কিভাবে ব্যবহার করবে সেই বিষয়েও আমাদের দেশে কোনো আইন নাই। মোবাইল কোম্পানিগুলো তাদের বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ কোথায় কিভাবে সংরক্ষণ ও ব্যবহার করবে তার ওপর রাষ্ট্রের কোনো নিয়ন্ত্রণ নাই, নীতিমালাও নাই। এই অবস্থায় নাগরিকদের হাতের ফিঙ্গারপ্রিন্ট মোবাইল কোম্পানির হাতে তুলে দেওয়া ভয়ানক বিপজ্জনক। সিমের বায়োমেট্রিক নিবন্ধন অপরাধ দমন করবে বা অপরাধ দমনে সহায়ক হবে এর চেয়ে হাস্যকর অনুমান আর কিছুই হতে পারে না। অপরাধ দমনের জন্য সবার আগে দরকার সুষ্ঠু বিচারব্যবস্থা, স্বচ্ছ প্রশাসন ও পুলিশ, পুলিশি ব্যবস্থাকে দলীয়করণ থেকে মুক্তি, ইত্যাদি। অর্থাৎ একটি দক্ষ ও স্বচ্ছ ফৌজদারি বিচারব্যবস্থা। এখানেই শেষ নয়। দরকার স্বচ্ছ ও বলবৎযোগ্য আইন ও তার সুষ্ঠু প্রয়োগ। নিদেনপক্ষে এই ব্যবস্থাকে আইনানুগ হতে হবে। তো তার কোনো খবর নাই কিন্তু মোবাইল কোম্পানির সিম নিবন্ধন দিয়ে অপরাধ দমন খুবই হাস্যকর অনুমান। আমি ফেসবুকে সিম নিবন্ধনের বিরোধিতা করায় অনেকে খুব বীর হয়ে গিয়েছেন। লিখেছেন, আমি তো সন্ত্রাসী বা চোর নই তবে কেন ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে সিম নিবন্ধন করতে ভয়? এটা ভীতু বা বীরত্ব প্রদর্শনের তর্ক নয়। অনেকের দাবি এতে ভুয়া আইডি বন্ধ হবে। এটাও হাস্যকর যুক্তি। এতে বরং বিপদ বাড়বে। ঠিক যে এখন অপরাধীরা ভুয়া আইডি ব্যবহার করতে পারে, কিন্তু কোথা থেকে কল করছে নতুন প্রযুক্তিতে তা ট্রেইস করা সম্ভব এবং ধরা মোটেও কঠিন নয়। ফোন কল অনুসরণ করে অপরাধী ধরা পড়েছে তার বিস্তর নজির আছে। কিন্তু এখন ভুয়া আইডি ব্যবহার না করে অপরাধীরা অন্যের নামে, ধরুন আপনার নামে নিবন্ধিত সিম ব্যবহার করবে। অপরাধী হবেন আপনি। মোবাইল কোম্পানিগুলো ব্যবসায়ী প্রতিষ্ঠান, তারা ব্যবসার জন্য ডাটাবেইজ থেকে অন্যের তথ্য ও ফিঙ্গারপ্রিন্ট দিয়ে অপরাধীদের কাছে সিম বিক্রি করতে পারে। এটা রোধ করার কোনো আইনী ব্যবস্থা নাই। তারা যে সেটা করবে না তার গ্যারান্টি কী? নিরপরাধ নাগরিক অপরাধী হিসাবে শাস্তি পেয়ে যেতে পারেন। সাধু সাজার জন্য বা আমি অপরাধী না তাহলে সিম নিবন্ধনে ভয় কী বলে অনেকে সিম নিবন্ধনের যে যুক্তি দিচ্ছেন তারা নিশ্চয়ই জানেন বা অনায়াসেই অনুমান করতে পারেন চোর, ডাকাত, খুনিসহ নানান কিসিমের ছোট-বড় অপরাধীও বায়োমেট্রিক কায়দায় সিম নিবন্ধন করেছে। তো আপনি সিম নিবন্ধন করে একই কাতারেই যোগ দিয়েছেন, সাধু হননি। সিম নিবন্ধনের মধ্যে নিজেকে অপরাধী না ভাবা, নিজেকে সাধু জ্ঞান করা, অন্যে করছে না বলে ভীতু বা অপরাধী ভাবার মতো আহাম্মকি আর কিছুই হতে পারে না। আশা করি তারা বুঝবেন বিষয়টি আরো অনেক বড়। ‘সমাজ নিরপরাধ ও অপরাধীতে বিভক্ত’: সমাজ বোধের মারাত্মক বিকৃতি অপরাধ দমন তত্ত্বের জায়গায় দাঁড়িয়ে সিম নিবন্ধনের পক্ষে অবস্থানের বিপদ অনেক অনেক গভীরে। এখানে অনুমান হচ্ছে সমাজ অপরাধী ও সাধু এই দুই ভাগে বিভক্ত। অপরাধের আর্থসামাজিক বিচার এখানে অনুপস্থিত। বাজার ব্যবস্থার চোটে ভেঙে পড়া সমাজে সামাজিক সম্পর্ক ও নৈতিক ভিত্তিগুলো কিভাবে দুর্বল হয়ে গিয়েছে সেটা বোঝার কারো অবসর নাই। আধুনিক সমাজে ব্যক্তি আছে, কিন্তু সমাজ নাই, অতএব এই অনুমানই বদ্ধমূল হয় যে নীতিহীনতা ও অপরাধের মোকাবিলা করবে সমাজ থেকে আলাদা ও সমাজের ঊর্ধ্বে থাকা ফৌজদারি আইন ও পুলিশ। তদারকি করবে রাষ্ট্র। সমাজ বিচ্ছিন্ন ব্যক্তির নিরাপত্তার অধিক কোন সামগ্রিক সামাজিক নিরাপত্তার ধারণা করবার সামর্থ্য ব্যক্তিতান্ত্রিক সমাজ হারিয়ে ফেলে। এই ধারণার প্রাবল্যের ওপর পুলিশি রাষ্ট্র গড়ে ওঠে ও শক্তিশালী হয়। যারা নিজেদের অপরাধী মনে করে না তাদের তাই উচিত সিম নিবন্ধন করা- এই ধারণা এই সমাজে গড়ে ওঠার সঙ্গত কারণ রয়েছে। এমনকি নিজের অধিকার ক্ষুণ্ন করে হলেও নিজেকে রাষ্ট্রীয় নজরদারির হাতে সমর্পণ করবার জন্য বায়োমেট্রিক নিবন্ধনকে স্বাগত জানাতে সমাজ গররাজি হয় না। সিম নিবন্ধনের জন্য মানুষের ভিড় দেখে আমরা তা আন্দাজ করতে পারি। তাহলে দেখা যাচ্ছে বায়োমেট্রিক সিম নিবন্ধনের বিরোধিতা নিয়ে কিছু বলার আগে আমাদের এইসব নানান অনুমান নিয়ে কথা বলতে হচ্ছে। অথচ বিষয়টি এতোই গুরুত্বপূর্ণ যে এ বিষয়ে দীর্ঘ আলোচনা-পর্যালোচনা দরকার। রাষ্ট্র নাগরিকদের নাম সাকিন পরিচয় নিবন্ধিত করে, এটা নতুন কিছু নয়। নাগরিকদের শাসন ও নিয়ন্ত্রণের জন্য আধুনিক রাষ্ট্র কেন এখন আরো বিস্তৃত ও নিখুঁত টেকনোলজিকাল নজরদারির ক্ষমতা আয়ত্ত করতে চাইছে সেটা একালে ক্ষমতা, আধুনিক সমাজ ও রাষ্ট্রতত্ত্বের প্রধান আলোচ্য বিষয়। যারা ফরাসি দার্শনিক মিশেল ফুকো কিম্বা ইতালির দার্শনিক আগামবেনের লেখালেখির খোঁজখবর রাখেন তারা নিশ্চয়ই জনগণকে শৃংখলিত ও নিয়ন্ত্রিত রাখবার জন্য আধুনিক রাষ্ট্রের নানাবিধ কারিগরি সম্পর্কে অবহিত। এই কারিগরির বিচার নাগরিকত্ব, কোনো প্রকার উপদ্রব ও বাইরের হস্তক্ষেপ ছাড়া ব্যক্তির শান্তিপূর্ণ জীবনের নিশ্চয়তা দেবার প্রতিশ্রুতি- যা ব্যক্তিস্বাধীনতা বা ‘প্রাইভেসি’র অধিকার হিসাবে পরিচিত- ইত্যাদি নানান প্রসঙ্গের সঙ্গে জড়িত। তাহলে আধুনিক রাষ্ট্রের নজরদারির শক্তি ও বিস্তৃতি ভয়ানক ভাবে বৃদ্ধির সঙ্গে এ কালে আধুনিক রাষ্ট্রের রূপান্তর জড়িত। কী সেই রূপান্তর সেটা আমাদের বোঝা দরকার। এই দিকটি না বুঝলে একালে কোনো প্রকার অর্থপূর্ণ গণমানুষের রাজনীতির বিকাশ ও পুনর্গঠন অসম্ভব। আগামী কিস্তিগুলোতে আমরা এ বিষয়ে আলোচনা করব। ফরহাদ মজহার: কবি, কলামিস্ট ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:ভিডিও >> যে মুরগি দেখতে কালো, ডিম-মাংসও কালো! Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ ভিডিও >> যে মুরগি দেখতে কালো, ডিম-মাংসও কালো! 03 Oct, 2016 মুরগি মানে আপনার চোখে ভেসে আসে সাদা, খয়েরি, লালচে, কালো ছোপ ছোপ অথবা হলদেটে রংয়ের। কিন্তু ‘আয়াম সেমানি’ নামের এই মুরগিটি একেবারে কালো। এর গোটা শরীর কালো! মেঘ কালো, আঁধার কালো, কৃষ্ণ কালো. বিশ্বের মধ্যে শুধুমাত্র ইন্দোনেশিয়াতেই পাওয়া যায় এই আয়াম সেমানি মুরগিকে। এর গায়ের সব কিছুর রং কালো। গায়ের পালক কালো। চামড়া কালো। ঠোঁট, নখ, ঝুঁটি, মুখ, জিভ, এমনকি শরীরের ভিতরের মাংস, অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ এমনকি হাড় পার্যন্ত কালো! ইন্দোনেশিয়ায় এই মুরগি অনেক ধার্মিক কারণেও ব্যবহার করা হয়। পরবর্তীকালে হল্যান্ড এবং চেক প্রজাতন্ত্র আর স্লোভাকিয়াতেও এই ধরনের মুরগির জন্ম দেওয়া হচ্ছে হাইব্রিড করে। ভারতের মধ্য প্রদেশেও এর হাইব্রিড করা হয়। সেখানে নাম করকনাথ চিকেন। মুরগিটির রক্তের রং লাল হলেও সেটাও বেশ গাঢ় লাল নয়। বরং কালচে লাল বা খয়েরি ধাঁচের বলতে পারেন। আর ডিমগুলো বেশ কালো ধরনের। তবে বাদামি ধাঁচের। আসলে ইন্দোনেশিয়ার স্থানীয় ভাষায় আয়াম শব্দের অর্থ হলো মুরগি। আর সেমানি শব্দের অর্থ হলো কালো। ইন্দোনেশিয়ার জাভায় পরীক্ষা করে বিজ্ঞানীরা জেনেছেন, আয়াম সেমানিরা এই পৃথিবীতে অন্তত ৯০০ বছর আগে থেকে রয়েছে। অনেক অনেক গল্প এই মুরগিকে নিয়ে। সেখানকার মানুষ বিশ্বাস করে এই মুরগি সৌভাগ্য এনে দেয় জীবনে। আয়াম সেমানির মাংসতে এত বেশি আয়রন থাকে, যা অন্য কোনো মাংসে নাকি থাকে না। গর্ভবতী নারীরা এই মুরগির মাংস খেলে, তার শরীর ভালো থাকে। সুস্থভাবে সন্তানের জন্ম দিতে পারেন এবং তাতে তাদের সন্তানও বুদ্ধিমান ও শক্তিমান হয়! আয়াম সেমানি হলো সেই মুরগি যা সম্ভাবত বিশ্বের সবথেকে দামি মুরগি! হ্যাঁ, আমেরিকাতে আজ থেকে ১৫ বছর আগেও সচরাচর কোথাও এই মুরগি একটি পাওয়া গেলে, তার দাম কমপক্ষে আড়াই হাজার ডলার বা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ২ লাখ এর মতো হতো। উৎসঃ আরটিএনএন প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 23 Sep, 2016 বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 24 Aug, 2016 বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প, আতঙ্ক 20 May, 2016 কতটা শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু? 18 May, 2016 ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ >> দেশ পরিণত হবে মরুভূমিতে 14 May, 2016 বজ্রাঘাত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা 02 May, 2016 কালও বৃষ্টি হতে পারে 27 Apr, 2016 উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ, হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদী 17 Apr, 2016 বিশ্বজুড়ে ঘনঘন ভূমিকম্প, বড় কম্পনের হুঁশিয়ারি শীর্ষ বিজ্ঞানীর 17 Apr, 2016 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধেয়ে আসছে আকস্মিক বন্যা 16 Apr, 2016 চারটি তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা 22 Mar, 2016 পানি সংকটের ভয়াবহতা বাড়ছে 17 Mar, 2016 যমুনায় হাঁটুজল 23 Feb, 2016 তলিয়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-চট্টগ্রাম! 05 Feb, 2016 তিস্তার সব পানিই নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, এদেশে এখন শুধু বালুচর 29 Jan, 2016 পঞ্চগড়ের পথে পথে গোলাপি-বেগুনি রডোডেন্ড্রনের বাহার 26 Jan, 2016 যানজটে শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভোগে ৭৩% মানুষ 05 Jan, 2016 ২৬ মের মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে? 03 Dec, 2015 ফের সুন্দরবন বিপর্যয়ের শঙ্কা : ৭৪৫ টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে চরে আটকা এমভি শোভন 10 Nov, 2015 কৃষির হুমকি আফ্রিকান শামুক 13 Sep, 2015 ৮০০ বাঁধ তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে! 08 Sep, 2015 মানুষকে ছায়া দেওয়াই যাঁর নেশা 02 Sep, 2015 শুক্রবার থেকে আরো বৃষ্টি! 24 Aug, 2015 ভিডিও >> মরুকরণের দিকে যাচ্ছে ঢাকা! 22 Aug, 2015 এক্সক্লুসিভ ভিডিও >> বিমানের উপর বজ্রপাত পড়লো যেভাবে 14 Aug, 2015 সালফারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাতাস 31 Jul, 2015 ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’: নামকরণের নেপথ্যে 30 Jul, 2015 ঝড়ের তীব্র বেগে উড়ে গেলো মানুষ! 30 Jul, 2015 ভিডিও >> টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ 29 Jul, 2015 সাগরে গভীর নিম্নচাপ>>৩-৪ ফ‍ুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা;আতঙ্কে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ 23 Jul, 2015 ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প >> ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে বাংলাদেশে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:পুরনো অবস্থানেই আইসিসি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> খেলা পুরনো অবস্থানেই আইসিসি 11 Oct, 2016 শাস্তি দেয়ার ব্যাপারে অভিনব সিদ্ধান্তের ধারা বজায় রেখেছে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিল, আইসিসি। রকেট বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডে ম্যাচে উত্তপ্ত বাক্য বিনিময়ের অপরাধে জরিমানা গুনছেন বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মুতর্জা ও অলরাউন্ডার সাব্বির রহমান। কিন্তু ইংল্যান্ডের ওয়ানডে অধিনায়ক জস বাটলারকে শুধু তিরস্কার করা হয়েছে। ঘটনার শুরু ইংলিশ ইনিংসের ২৮তম ওভারে। পেসার তাসকিনের প্রথম বলে লেগবিফোর আউট হন জস বাটলার। ৫৭ রানে আউট হওয়া বাটলার প্যাভিলিয়নে ফেরার পথে বাংলাদেশ দলের ক্রিকেটারদের সঙ্গে বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়েন। আম্পায়ারের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি শান্ত হয়। ইংলিশ অধিনায়ক অবশ্য জানিয়েছিলেন, টাইগারদের উৎসব উদযাপন তার পছন্দ হয়নি। ম্যাচ শেষে আবারো দুই দলের খেলোয়াড়রা বিরোধে জড়ান। ইংলিশ ওয়ানডে ক্যাপ্টেন নাকি বিজয়ী বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সঙ্গে হাত মেলাতে চাননি। ২৪ ঘণ্টারও কম সময়ে ম্যাচ রেফারি জাভাগাল শ্রীনাথ অনফিল্ড আম্পায়ার আলীম দার ও শরফুদৌল্লা ইবনে সৈকতের বক্তব্য শুনে অভিযুক্ত খেলোয়াড়দের বিপক্ষে শাস্তি ঘোষণা করেন। আচরণবিধির আর্টিক্যাল দুইয়ের ১ দশমিক সাত ধারা লংঘন করায় মাশরাফি ও সাব্বির রহমানকে ম্যাচ ফি’র কুড়ি শতাংশ জরিমানা করা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে আনা হয়েছে অশালীন ভাষা প্রয়োগ ও আক্রমণাত্মক আচরণের। ম্যাচ রেফারির অভিযোগ সাফল্য উদযাপনের জন্য বাংলাদেশী ক্রিকেটাররা বাড়াবাড়ি করেছেন যা বাটলারকে অনাকাংখিত আচরণে প্রলুদ্ধ করেছে। ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলারকে আচরণবিধির দুইয়ের এক দশমিক চার ধারা লংঘন করার অপরাধে অপরাধী ঘোষণা করা হয়েছে। তবে তার জন্য শাস্তি নাম কা ওয়াস্তে, স্রেফ তিরস্কার। অভিযুক্ত তিন ক্রিকেটারেরই অবশ্য র‌্যাংকিং পয়েন্ট থেকে এক পয়েন্ট কাটা যাবে। ঘটনার সূচনা বাটলারের অসংযত আচরণে, এরপর জড়িয়ে পড়েন মাশরাফি, সাব্বিরসহ অন্যরা। কিন্তু, ভক্তদের মতে, আইসিসি’র তিন মোড়ল তোষণের অলিখিত প্রথায় শাস্তি পেলেন দুই বাংলাদেশী ক্রিকেটার মাশরাফি ও সাব্বির। উৎসঃ আরটিএনএন প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 13 Sep, 2015 মামলা নিষ্পত্তির আগে ক্রিকেট খেলতে পারবেন না শাহাদাত! 11 Sep, 2015 সাময়িক নিষিদ্ধ হতে পারেন শাহাদাত! 08 Aug, 2015 সুন্দরবনে ফিরছেন টাইগার! 25 Jun, 2015 ভারতের মাটিতে এবার কি খেলতে পারবে বাংলাদেশ? 04 Nov, 2016 বিপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচের টসও হলো না বৃষ্টিতে 04 Nov, 2016 বিপিএলের শুরুতেই বৃষ্টির বাগড়া 02 Nov, 2016 মিরাজের বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী 02 Nov, 2016 সুখবর দিলেন মুস্তাফিজ 31 Oct, 2016 শুধু বোলিং নয় ভবিষ্যতে ব্যাটিংয়েও প্রতিভা দেখাবো: মিরাজ 31 Oct, 2016 ইত্তেফাক মালিকের কাছ থেকে পাঁচ কোটি টাকা আদায়ের প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর 31 Oct, 2016 অটো চালকের ছেলের হাতে ইংল্যান্ড হেরে গেল : ভারতীয় মিডিয়ায় মিরাজ 30 Oct, 2016 'ভাগ্য ভালো আমরা ২-০ তে টেস্ট সিরিজ হারিনি' 30 Oct, 2016 ম্যান অফ দি ম্যাচ ও সিরিজ দুটিই 'মিরাজ' 30 Oct, 2016 মিরাজ-জাদুতে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় 30 Oct, 2016 ইংল্যান্ডের দুর্দান্ত শুরু 30 Oct, 2016 ইংল্যান্ডকে ২৭৩ রানের টার্গেট দিলো বাংলাদেশ 29 Oct, 2016 দ্বিতীয় ইনিংসেও ধস-রোগে বাংলাদেশ 29 Oct, 2016 আবার মিরাজ-তাইজুলের ভেলকি, শেষ হলো ইংল্যান্ডের ইনিংস 29 Oct, 2016 যেখানে মিরাজই একমাত্র 28 Oct, 2016 গ্যালারিতে কাঁদলেন মুশফিকের মা! 28 Oct, 2016 পুরনো চেহারায় বাংলাদেশ 28 Oct, 2016 প্রথম সেশনে বাংলাদেশের ১১৭ রানের জুটি 28 Oct, 2016 টস জিতে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত 26 Oct, 2016 এবার প্রতিবন্ধী ভক্তের স্বপ্নপূরণ করে আবার নায়ক হলেন মাশরাফি 24 Oct, 2016 চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের ভুলগুলো কী ছিল? 24 Oct, 2016 ৩ বলেই স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের! 22 Oct, 2016 স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের ২৭ রানে শেষ ৬ উইকেট 21 Oct, 2016 মিরাজ-তাইজুলের ঘূর্ণিতে ২৯৩ রানে শেষ ইংল্যান্ড 20 Oct, 2016 চলছে সাকিব-মেহেদির ভেলকি, ইংলিশদের পঞ্চম উইকেটের পতন 15 Oct, 2016 একের পর এক সাব্বিরের আঘাতে বিপর্যস্ত ইংল্যান্ড Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর 02 January 2016, Saturday ফরহাদ মজহারঃ সবাইকে ঈসায়ী নববর্ষের শুভেচ্ছা। নতুন বছরের শুরুতে অল্প কিছু কথা বলব। বরং সবাইকে বলব, ভাবুন, আমরা কোনদিকে যাচ্ছি। চরম দুর্নীতি, লুটপাট, নাগরিক ও মানবিক অধিকার লংঘন এবং ভোটের তামাশা সত্ত্বেও আমি মনে করি না বাংলাদেশের জনগণ ভুল পথে যাচ্ছে। গত বছরের (২০১৫) শেষে পৌরসভার নির্বাচন গিয়েছে। নির্বাচনে কারচুপি ঘটেছে, একে কোনো অর্থেই নির্বাচন বলা যায় না। ইসির ভূমিকা নিন্দনীয়। বিএনপি যথারীতি তা প্রত্যাখ্যান করেছে। পৌর নির্বাচনের ফলাফল দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতির চরিত্রে বদল ঘটল কিনা অনেকে সেই প্রশ্ন তুলছেন। আদৌ কোনো বদল হয়েছে কিনা বুঝতে পারব কি? আমার ধারণা, বুঝব। কিন্তু সবার আগে বুঝতে হবে, শেখ হাসিনার অধীনে বিরোধী রাজনৈতিক জোটের নির্বাচন বর্জনের সিদ্ধান্ত ছিল সঠিক সিদ্ধান্ত। কিন্তু এরপর রাজনীতিতে নির্ণায়ক শক্তি হয়ে উঠতে হলে কী ধরনের নীতি ও কৌশল দরকার, খালেদা জিয়া সেক্ষেত্রে তার দলের ভেতর থেকে কারও সহযোগিতা পাননি। বরং একটি ধারা গড়ে উঠেছে, যারা নির্বাচন বর্জনের ছুতা ধরে দলের অভ্যন্তরে বিরোধ তৈরি এবং আওয়ামী লীগের সঙ্গে আঁতাতের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। সম্ভবত এদের চাপেই খালেদা জিয়া পৌর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেছেন। অন্য যুক্তি হচ্ছে, তৃণমূলে কর্মীদের রাজনীতিতে সক্রিয় রাখারও দরকার ছিল। কিন্তু এখন স্পষ্ট হয়ে যাওয়া উচিত, স্রেফ নির্বাচন দিয়ে অবৈধ ক্ষমতাকে মোকাবেলা করা হাস্যকর। সেটাই পৌর নির্বাচনে প্রমাণিত হল। ক্ষমতাসীনরা সুষ্ঠু নির্বাচনী পন্থায় ক্ষমতা ছাড়বে না। এটা নিশ্চিত। কিন্তু এরপরও জাতীয় নির্বাচন বর্জনের জন্য বিএনপিকে দোষারোপ করে যারা বিএনপিকে কোণঠাসা করতে চাইছে, পৌর নির্বাচনে নগ্ন কারচুপি ও তামাশা তাদের জন্য খালেদা জিয়ার উত্তর হিসেবে আমরা পাঠ করতে পারি। এরপরও ফ্যাসিস্ট শক্তির পক্ষে দালাল সাফাই গানেওয়ালাদের অভাব হবে না। তাতে আমাদের চিন্তিত হওয়ার কিছু নাই। পৌর নির্বাচনে কী ঘটেছে তার পুরো ছবি আমাদের কাছে নাই। এ অভাব বাংলাদেশের জনগণের এখনকার রাজনৈতিক মানসিকতা বোঝার ক্ষেত্রে বড় ধরনের কোনো বাধা নয়। সন্দেহ নাই, পৌর নির্বাচনে এক ধরনের নির্বাচনী তামাশা হয়েছে। কিন্তু সত্য হল, এটাই যে ঘটবে এ ব্যাপারে আগাম কোনো সন্দেহ ছিল না। বিএনপি এই নির্বাচনে নগ্ন কারচুপি হবে সে ‘আশংকা’ ব্যক্ত করেই অংশগ্রহণ করেছে। কিন্তু এ নির্বাচন থেকে তারা কী অর্জন করতে চেয়েছে এবং তারা তা পেরেছে কি-না সেটা একমাত্র ভবিষ্যতই বলতে পারবে। বিএনপির মধ্যে কিছু মধুর স্মৃতি কাজ করে থাকতে পারে। মনে আছে কি-না যে, ২০০১ সালের সংসদ নির্বাচনে বিএনপি ১৯৩ আসন পেয়েছিল। তবে ২০০৮ সালে তারা মাত্র ২৯ আসন পেয়েছিল। কিন্তু ভোটের পরিসংখ্যানের দিকে তাকালে তা কোনো বিপর্যয় ছিল না। আওয়ামী লীগ ভোট পেয়েছিল ৪৯ ভাগ; বিপরীতে বিএনপি ভোট পেয়েছিল ৩৩.২ ভাগ। ক্ষমতায় আসার ৫ বছরের মধ্যে আওয়ামী লীগ তার ক্ষমতার ভিত্তি পোক্ত করে নিতে সক্ষম হয়েছিল। কিন্তু দুর্নীতি, মানবাধিকার লংঘন, একনায়কতান্ত্রিক ফ্যাসিস্ট শাসনকে সাংবিধানিক চরিত্র দেয়ার কারণে তার বিরুদ্ধে প্রবল বিক্ষোভও ছিল। তার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিল আওয়ামী সেক্যুলার রাজনীতির রাজনীতি নিয়ে কূটচাল। আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে বিবর্তিত হয়ে আসা আওয়ামী লীগের ধ্র“পদী চরিত্রের সঙ্গে যা ছিল একদমই বেমানান। সেকুলারিজম ও মুক্তিযুদ্ধের নামে আওয়ামী লীগের ঘাড়ে চড়ে একটি হীনশক্তি বাংলাদেশকে বিভক্ত ও বিভাজিত করে চলেছে। এ শক্তির ওপর ভর করে আওয়ামী লীগ কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক ইসলামী আন্দোলনের বিরুদ্ধে যেভাবে যুদ্ধে নেমে পড়েছিল, তাতে দলটি ইসলামবিরোধী শক্তি হিসেবে নিজেকে জাহির করেছে। সেই কলংক থেকে আওয়ামী লীগের মুক্তি পাওয়া কঠিন। কিন্তু এর কিছুই বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট নিজের পক্ষে ব্যবহার করতে পারেনি। বিএনপি-জোটের মধ্যে জামায়াতে ইসলামীসহ ইসলামপন্থী দলগুলো থাকা সত্ত্বেও ইসলাম প্রশ্নে বিএনপির অবস্থান ছিল দোদুল্যমান। ধর্ম নিয়ে কৌশলী আওয়ামী মার্কা রাজনীতির বিপরীতে একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের শক্তি হিসেবে বিএনপি তার ভাবমূর্তি রক্ষা করতে পারেনি। জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে তার সম্পর্কটাকেই আওয়ামী প্রচারণা প্রধান করে তুলতে পেরেছে। কিন্তু কওমি মাদ্রাসাকেন্দ্রিক দেওবন্দি ধারার ইসলামপন্থী দলগুলোও বিরোধী জোটে ছিল। ঔপনিবেশিক ইংরেজবিরোধী এবং বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের এ ধারার সমর্থন পেয়েও বিএনপি তাকে নিজের ভাবমূর্তি গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ব্যবহার করতে পারেনি। এখানে মনে রাখা দরকার যে, হাফেজ্জী হুজুর একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধকে বলছিলেন জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াই। ইসলামের জায়গা থেকে জাতীয়তাবাদী বিকারে পদস্খলিত না হয়ে মজলুমের পক্ষে বাংলাদেশের বহু আলেম-ওলামা দাঁড়িয়েছিলেন। তারা বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোটের সমর্থক ছিলেন। কিন্তু বিএনপি একাত্তরে জামায়াতের ভূমিকার ভার বহন করতে গিয়ে আওয়ামী প্রচারণার মুখে নিজেকে খামাখা বিপর্যস্ত হতে দিয়েছে। আসলে ধর্মবিদ্বেষী কিংবা তথাকথিত ‘ধর্মনিরপেক্ষ’ না হয়েও কী ধরনের রাজনৈতিক চর্চা বিএনপিকে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিকভাবে গ্রহণযোগ্য দল হিসেবে স্বীকৃতি দিতে পারে, সে সম্পর্কে বিএনপির মধ্যে চিন্তাভাবনার অনুপস্থিতি অবিশ্বাস্যই বলতে হবে। বিএনপি জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে জোট বেঁধে চলে, ইসলামপন্থীদের তার সঙ্গে রাখে। এর নীতিগত ভিত্তি সম্পর্কে বিএনপির সুস্পষ্ট কোনো ব্যাখ্যা নাই। উপমহাদেশে ইসলামের ভূমিকা ব্যাখ্যার মধ্য দিয়েই উপনিবেশবিরোধী মুক্তি সংগ্রামের ঐতিহাসিক ধারার সঙ্গে বিএনপি নিজেকে যুক্ত রাখতে পারত। কিন্তু বিএনপির বুদ্ধিজীবী বা প্রচারকদের মধ্যে সেই বুদ্ধিবৃত্তিক হিম্মত আমরা দেখিনি। ফলে বিএনপি মুক্তিযুদ্ধবিরোধীদের সঙ্গে আঁতাত করা একটি দল হিসেবে নিজের পরিচয়কে বাড়তে দিয়েছে। তার বিরুদ্ধে কোনো কার্যকর পাল্টা প্রচার আজও গড়ে তুলতে পারেনি। বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট মূলত নির্বাচনী জোট, পার্লামেন্টারি রাজনীতিতে তা নাজায়েজ কিছু নয়। কিন্তু এ জোট নিয়েই বিএনপি আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে নির্বাচন নয়, আন্দোলন করেছে; হরতাল ডেকেছে, রাস্তায় লড়েছে। দুই পক্ষের হানাহানিতে মানুষ মরেছে, মানুষ পুড়েছে। বিএনপি পরিষ্কার বুঝিয়ে দিয়েছে, ইসলামপন্থীদের সঙ্গে বিএনপির জোট নির্বাচনী জোট নয়, এটা আন্দোলন-সংগ্রামের রাজনৈতিক জোট। কিন্তু এ জোটের নৈতিক ভিত্তি বিএনপি স্পষ্ট করতে পারেনি। প্রশ্ন উঠেছে, তাহলে স্বাধীনতাবিরোধী শক্তির সঙ্গে জোট কেন? দ্বিতীয়ত, ইসলামপন্থীদের সঙ্গেই বা তার জোটের আদর্শিক ভিত্তি কি? বিএনপি ইসলামকে কী চোখে দেখে? এসব প্রশ্নের জবাব না দিয়ে বিএনপি রাজনীতি করতে চেয়েছে। তার ফল ভালো হয়নি। ধর্মকে কেন্দ্র করে রাজনীতি হতে পারে না কেন? অবশ্যই হতে পারে এবং হচ্ছেও বটে। সারা দুনিয়াতে হচ্ছে, বাংলাদেশেও ধর্ম রাজনীতির গুরুত্বপূর্ণ উপাদান। সেটা ইসলামপন্থী হতে পারে, নাও হতে পারে। এমনকি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীর বয়ান অনুযায়ী ‘ইসলামী সমাজতন্ত্র’ও হতে পারে। দ্বিতীয়ত, ঔপনিবেশিক আমলে এ দেশের জনগণের আন্দোলন-সংগ্রাম ঐতিহাসিক কারণে ধর্মকে কেন্দ্র করেই হয়েছিল। সেটা সফলও হয়েছিল। দেশের মানুষ জমিদার-মহাজনদের হাত থেকে মুক্তি চেয়েছিল। পাকিস্তান আমলে তারা তা পেয়েছেও বটে। তদুপরি পাকিস্তান না হলে বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পারত না। দিল্লির অধীন একটি রাজ্য হিসেবে থাকতে হতো, যেখানে ইসলাম ধর্মাবলম্বীরা সংখ্যালঘু। বাংলাদেশের জনগণের সার্বভৌমত্ব এবং আত্মমর্যাদার প্রশ্ন তার ধর্ম চেতনার সঙ্গে সরাসরি যুক্ত। সাধারণ মানুষ মনে করে, একাত্তরে ‘ধর্মনিরপেক্ষতা’র জন্য মানুষ যুদ্ধ করেনি, সেটা স্বাধীনতার ঘোষণাতেও নাই। এটা দিল্লির চাপিয়ে দেয়া নীতি। যার উদ্দেশ্য এ দেশের জনগণের বিশ্বাস ও চর্চা- অর্থাৎ তাদের সংস্কৃতি, ঈমান ও আকিদার সরাসরি বিরোধিতা। তারা একে ইউরোপীয় এনলাইটমেন্টের প্রস্তাব হিসেবে গ্রহণ করেনি। ইসলামবিরোধী রাজনীতির আদর্শ হিসেবে বুঝেছে। এটা স্পষ্ট বোঝা দরকার, ইসলাম এ দেশের জনগণের রাজনীতির প্রধান আকর্ষণের বিষয়। একে উপেক্ষা করার সুযোগ নাই। ভাসানী ন্যাপ পুরোটা নিয়েই জিয়াউর রহমান বিএনপি গড়ে তুলেছিলেন। ধর্মবাদীদেরও বাইরে রাখেননি। ভাসানী ধর্মকে রাজনীতি থেকে পৃথক না করেও কমিউনিস্টদের সঙ্গে জালিমের বিরুদ্ধে মজলুম জনগণের লড়াই-সংগ্রাম করে গিয়েছেন। কমিউনিস্টদের সঙ্গে যে কারণে তিনি কাজ করেছেন। যুদ্ধ করে বাংলাদেশ স্বাধীন করেছেন বলে জিয়াউর রহমানের রাজনীতির কেন্দ্রীয় বিষয় ছিল বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার জন্য গণমানুষের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের সঙ্গে সম্পৃক্ত ভারতীয় আধিপত্যবাদবিরোধী শক্তির ঐক্য গড়ে তোলা এবং বাকশালী অর্থনীতির বিপরীতে গতিশীল অর্থনৈতিক বিকাশ ও উন্নয়ন। দ্বিতীয়ত, ছোট দেশ হলেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিপরীতে দক্ষিণ এশিয়ায় বহুপাক্ষিক সম্পর্ক বিকশিত করে ভারতের সঙ্গে শক্তির অসমতা সামাল দেয়ার শর্ত বিকশিত করা। ভুলে যাওয়ার কথা নয়, এ লক্ষ্যেই দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক জোট ‘সার্ক’ জিয়াউর রহমানই গড়ে তুলেছিলেন। আফসোস, বর্তমান বিএনপির মধ্যে জিয়াউর রহমানের দূরদৃষ্টির ছিটেফোঁটা আছে কিনা সন্দেহ। মুখে বিএনপি নিজেকে জামায়াতের রাজনীতি থেকে আলাদা বলে বারবার দাবি করেছে। কিন্তু রাস্তার আন্দোলন-সংগ্রামে বিএনপির মূল সাংগঠনিক শক্তি ছিল জামায়াত ও শিবির। হেফাজতে ইসলামের ছায়ায় সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষের বিশাল বিক্ষোভ ও আন্দোলনকেও বিএনপি কাজে লাগাতে পারেনি। কারণ ইসলাম কিংবা ধর্মনিরপেক্ষতা কোনো বিষয়েই বিএনপি সুস্পষ্ট নয়। অন্যদিকে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের আইন ও বিচার প্রক্রিয়া নিয়ে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠলেও বিএনপি গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের জায়গা থেকে কোনো সমালোচনা-পর্যালোচনা করেনি। দুই এক কলি নাম কা ওয়াস্তে কথা বললেও তা বিচারিক প্রক্রিয়ার কোনো পর্যালোচনা ছিল না। চুপ থেকে বিএনপি ভেবেছে মুক্তিযুদ্ধের বিরোধী শক্তির সঙ্গে ‘আন্দোলনের আঁতাত’-এর দাহ নিজের গা থেকে সহজে ঝেড়ে ফেলতে পারবে। আফসোস, সেটা ঘটেনি। এর পূর্ণ সুযোগ আওয়ামী নেতৃত্বাধীন মহাজোট নিয়েছে। দল হিসেবে বিএনপির বিপর্যয় এতে ত্বরান্বিত হয়েছে। ইসলামপন্থীদের সঙ্গে জোট বাঁধার জন্য এ বিপর্যয় ঘটেনি। ইসলাম প্রশ্নে অস্পষ্টতার জন্যই এ বিপর্যয় ঘটেছে। বিএনপি মুক্তিযুদ্ধের দল। সত্য হচ্ছে এই যে, জিয়াউর রহমান একাত্তরের নয় মাস সরাসরি মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন, শেখ মুজিবুর রহমান নন। তবে রাজনৈতিক নেতা হিসেবে জিয়ার আবির্ভাবের কারণ হচ্ছে জিয়াউর রহমান সৈনিক ও জনতার মৈত্রীর চিহ্ন হিসেবে হাজির হয়েছিলেন। দিল্লির আধিপত্যবাদ, আগ্রাসন ও বাকশালী রাজনীতির বিপরীতে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে এ মৈত্রী বাংলাদেশের একমাত্র সম্বল, সাধারণ মানুষ তা বুঝেছিল। বিএনপির বর্তমান গভীর রাজনৈতিক বিপর্যয়ের সুনির্দিষ্ট তিনটি কারণ রয়েছে : এক. জিয়াউর রহমানের ঐতিহাসিক তাৎপর্য বুঝতে অক্ষম হওয়া এবং তার রাজনৈতিক দূরদৃষ্টি হারিয়ে ফেলা; দুই. ইসলাম প্রশ্নে অস্পষ্টতা, যা একইভাবে ধর্মনিরপেক্ষতা সম্পর্কেও চরম অজ্ঞতা এবং তিন. রাজনৈতিক নীতিহীনতা ও হিপক্রেসি। যার কারণে জনগণের বিশ্বাস বিএনপি ধরে রাখতে পারছে না। বাংলাদেশের জনগণ বর্তমান অবস্থা থেকে মুক্তি চায়, কিন্তু খোলামনে এ সংকটের মোকাবেলা না করলে বিএনপির ওপর বাংলাদেশের জনগণ ভরসা করবে না। গত এক দশকে নব্য আওয়ামী রাজনীতির ইসলাম বিদ্বেষ প্রকট আকার ধারণ করে। ইসলামের প্রতি আওয়ামী লীগের দৃষ্টিভঙ্গি আওয়ামী লীগের জন্যও বিপজ্জনক হয়ে উঠেছিল। কিন্তু এর কিছুই বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট নতুন গণতান্ত্রিক ও রাজনৈতিক আকাক্সক্ষা তৈরির কাজে ব্যবহার করতে পারেনি। অর্থাৎ বিএনপি পাল্টা এমন কোনো নীতিগত দাবি নিয়ে আসেনি যার কারণে বিএনপির নেতৃত্বাধীন জোট বাংলাদেশকে বিকল্প পথের সন্ধান দিতে পারে। তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবি ছাড়া আর কোনো রেকর্ড বিএনপির কাছ থেকে আমরা শুনিনি। শেখ হাসিনার প্রকট ক্ষমতা ও নিয়ন্ত্রণের অধীনে থেকেও আওয়ামী লীগের শাসনামলে ২০১১ সালে বিএনপি পৌর নির্বাচনের মধ্য দিয়ে তার জাতীয় চরিত্র অক্ষুণ্ণ রাখতে পেরেছিল। ২৩৬টি পৌরসভার মধ্যে বিএনপির সমর্থকরা ৯২টি আর আওয়ামী লীগ সমর্থকরা ৮৮টি পৌরসভায় জয়ী হয়েছিলেন। আর এখন তা উল্টে দাঁড়াল ১৭৮ বনাম ২২। তখন অধিকাংশ পৌরসভায় নির্বাচন হয়েছিল তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ। ২০১১ সালের সফলতার পেছনে ছিল বিএনপির ওপর সাধারণ মানুষের আস্থা। ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচনের পর অনুষ্ঠিত উপজেলা নির্বাচনেও বিএনপি এভাবে বিপর্যস্ত হয়নি। তখন তত্ত্বাবধায়ক সরকারব্যবস্থা বাতিলের পক্ষে যুক্তি দিতে গিয়ে আওয়ামী লীগের নেতারা স্থানীয় সরকারের নির্বাচনগুলোতে বিএনপি কতটা ভালো করেছে, সেই পরিসংখ্যান তুলে ধরেছিলেন। পৌরসভার নির্বাচনে ব্যাপক কারচুপি হয়েছে সন্দেহ নাই। আওয়ামী লীগ ধরে নিয়েছে বিএনপিকে রাজনীতি করার সুযোগ না দিয়ে এভাবেই তারা ‘নির্বাচন’ নামক প্রহসন চালিয়ে যাবে। বিএনপির ওপর জনগণের হতাশা স্থায়ী কিছু বলে আমি মনে করি না। দ্বিতীয়ত, বিদ্যমান ফ্যাসিস্ট ক্ষমতার বিপরীতে জাতীয় রাজনীতিতে মূলধারার রাজনৈতিক দলগুলোর জোটের গুরুত্বকে কোনোভাবেই হালকা করে ভাবা উচিত নয়। বিরোধী জোটের কঠোর সমালোচনা দরকার। কিন্তু মনে করি না বিএনপি দুর্বল বা বিপর্যস্ত হয়ে পড়লে তাতে এ মুহূর্তে বাংলাদেশের কোনো উপকার হবে। এতে হাততালি দেয়ার যেমন কিছু নাই, হতাশ হওয়ারও কোনো কারণ দেখি না। এর কারণ খুবই সোজা। আগামী দিনে যে রাজনীতি প্রবল শক্তি নিয়ে সামনে আসবে, তা তিনটি প্রশ্নের মোকাবেলা করার জন্যই আসবে। এক. সার্বভৌমত্ব বোধের সঙ্গে সৈনিকতা এবং নাগরিকতার মৈত্রী- আঞ্চলিক আধিপত্যবাদের বিরুদ্ধে লড়ার জন্য যা জরুরি। জিয়াউর রহমানের ঐতিহাসিক উত্থান ও তাৎপর্য ব্যাখ্যার মাধ্যমে বিএনপি তা এখনও বোঝাতে সক্ষম। দুই. ইসলাম প্রশ্নে স্পষ্টতা অর্জন, যা একইভাবে ধর্মনিরপেক্ষতার পর্যালোচনা। ইসলামকে ধর্ম ও ধর্মতত্ত্ব হিসেবে না বুঝে উপমহাদেশে ইসলামের ইতিহাস মনোযোগের সঙ্গে পাঠ করা। ধর্ম প্রসঙ্গে সেই অবস্থানই জরুরি আন্তর্জাতিক রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে যা খামাখা অন্য রাষ্ট্র বা অন্য রাষ্ট্রের জনগণের মনে কোনো সন্দেহ বা আশংকার সৃষ্টি না করে। নীতিগত দিক অস্পষ্ট রেখে শক্তিশালী রাষ্ট্রের সমর্থনের জন্য দালালি করলে কোনো ফল নাই, এটাও বোঝা দরকার; এবং তিন. রাজনৈতিক নীতিহীনতা ও হিপক্রেসি পরিহার। এ তিনটি দিকে বিএনপি মনোযোগী হবে কি-না আমরা জানি না। কিন্তু ফ্যাসিস্ট রাজনীতি ও রাষ্ট্রশক্তির বিরুদ্ধে জনগণের একটি লড়াই চলছে, যা বিএনপি বা তার জোটভুক্ত দলের অধীন নয়। এ রাজনীতি দুর্বল হওয়ার কোনো সম্ভাবনা নাই। বিএনপি ‘জাতীয়তাবাদ’ বলতে যদি এ ধারাটিকে সঠিকভাবে শনাক্ত করতে পারে এবং জনগণের রাজনৈতিক ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের ওপর দাঁড়ায়, জাতীয়তাবাদী শক্তি হিসেবে বিএনপির ফিরে আসা কয়েক মাসের ব্যাপার মাত্র। আমি নিশ্চিত ২০১৬ সাল হবে নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর। উৎসঃ যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 25 January 2016, Monday বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থার দুর্দশা নতুন কোনো খবর নয়, তবে সম্প্রতি বিচারকদের মধ্যে দ্বন্দ্ব যেভাবে প্রকাশ হয়েছে তাতে বিচারব্যবস্থার প্রতি সাধারণ মানুষের আস্থার সঙ্কট আরো তীব্র হতে পারে। কিছু দিন আগে অবসর নেয়া সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী যেভাবে প্রধান বিচারপতিকে ঘায়েল করার জন্য উঠে পড়ে লেগেছেন পৃথিবীর আর কোথাও এই প্রকার আচরণের কোনো নজির আছে কি না আমার জানা নেই। সাবেক এই বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক নামে পরিচিত। ব্যক্তিগত ও সঙ্কীর্ণ পেশাগত দ্বন্দ্বকে তিনি প্রকাশ্য করে বাংলাদেশের বিচারব্যবস্থাকে যেখানে নামিয়ে এনেছেন তাকে অবিশ্বাস্যই বলতে হবে। বিষয়টি স্রেফ বিস্ময়ের বিষয় হলে অসুবিধা ছিল না। কিন্তু সাবেক এই বিচারপতির আচরণ, উচ্চারণ এবং প্রধান বিচারপতির বিরুদ্ধে তার ভূমিকা স্র্রেফ বিচারব্যবস্থার প্রতি জনগণের আস্থা সজ্ঞানে বিনষ্ট করার শামিল। তার মন্তব্য ‘আদালত অবমাননা’র পর্যায়ে পড়ে। প্রধান বিচারপতিকে ঘায়েল করতে গিয়ে তিনি নিজের নাক কেটে পরের যাত্রা ভঙ্গ করবার মহৎ কাজে লিপ্ত হয়েছেন। বিচারব্যবস্থার বিপর্যয় এতে আরো ত্বরান্বিত হওয়ার ও ভেঙে পড়ার সমূহ সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে। বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে এই বিষয়টিকে আমরা উপেক্ষা করতে পারি না। কিছু দিন আগে প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলেছিলেন, ‘বিচার বিভাগের ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাইছে নির্বাহী বিভাগ’। বিচার বিভাগের দিক থেকে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের বিরুদ্ধে এই অভিযোগ গুরুতর। মনে রাখা দরকার মাহমুদুর রহমান উচ্চ আদালতের সিদ্ধান্ত চেম্বার জজ স্থগিত করে দিত বলে একই সারকথা বলেছিলেন। অ্যাটর্নি জেনারেল আদালতে রাষ্ট্রের নির্বাহী বিভাগের প্রতিনিধি। দেখা গেছে, হাইকোর্ট যখন কোনো মামলায় রায় দেন, অ্যাটর্নি জেনারেল তার স্থগিতাদেশ চেয়ে চেম্বার জজের কাছে আবেদন করেন। আদালতে নির্বাহী বিভাগের প্রতিনিধি অর্থাৎ অ্যাটর্নি জেনারেলের আবেদন অনুযায়ী চেম্বার জজ স্থগিতাদেশ মঞ্জুর করেন। নিয়মিত এই ঘটনা চলতে থাকলে সুপ্রিম কোর্টের একজন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী সাবেক বিচারপতি টি এইচ খান দৈনিক আমার দেশকে বলেছিলেন, হাইকোর্টের আদেশ স্থগিত করে দেয়াই যেন চেম্বার জজ আদালতের মূল কাজ। আর ঠিক এই কথাকেই দৈনিক আমার দেশ বলেছিল, ‘চেম্বার মানেই সরকার পক্ষে স্টে’। অথচ এই কথা বলার জন্য আদালত মাহমুদুর রহমানকে ছয় মাসের কারাদণ্ড দিয়েছিলেন। মাহমুদুর রহমান তার বক্তব্যের জন্য আদালতের কাছে ক্ষমা চাননি। চিন্তা, বিবেক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা ছাড়াও সত্য প্রকাশের দৃঢ়তার জন্য মাহমুদুর রহমান সাংবাদিকতার ইতিহাসে বিশাল উদাহরণ হয়ে থাকবেন। কিন্তু এখন প্রধান বিচারপতি সারমর্মের ভাষায় একই কথাই বলছেন: নির্বাহী বিভাগ বিচার বিভাগের ক্ষমতা কেড়ে নিতে চাইছে। নির্বাহী বিভাগ কেড়ে নেয়ার কাজটি অ্যাটর্নি জেনারেলের অফিসের মাধ্যমে চেম্বার জজের মাধ্যমে সম্পন্ন করছিল দৈনিক আমার দেশের এই অভিযোগ তাহলে মিথ্যা নয়। মাহমুদুর রহমানকে শাস্তি দেয়ার বেঞ্চে এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীসহ বিচারপতি এস কে সিনহাও ছিলেন। ইতিহাস এক প্রহসন বটে! সম্প্রতি প্রধান বিচারপতি সিনহা আবার বলেছেন, অবসর গ্রহণের পর বিচারপতিদের রায় লেখা আইন ও সংবিধানপরিপন্থী। বাংলাদেশের সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি হিসেবে তিনি একুশতম। গত ১৭ জানুয়ারি বিচারপতি হিসেবে তার এক বছর পূর্ণ হলো। প্রধান বিচারপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে মঙ্গলবার সুপ্রিম কোর্টের ওয়েবসাইটে তিনি একটি ‘বাণী’ দিয়েছেন। সেখানেই তিনি এই বোমাটি ফাটালেন। এই কথার পর পরই তার বিরুদ্ধে ক্ষমতাসীনদের সাঙ্গপাঙ্গরা আক্রমণ শুরু করে দিয়েছে। ফলে তিনি ঠিক কী বলেছেন সেটা আমাদের জানা দরকার। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বলছেন, ‘সুপ্রিম কোর্ট এর বিচারপতিগণ বাংলাদেশের সংবিধান, আইনের সংরক্ষণ, সমর্থন ও নিরাপত্তা বিধানের শপথ গ্রহণ করেন। কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না। আদালতের নথি সরকারি দলিল। একজন বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর আদালতের নথি নিজের নিকট সংরক্ষণ, পর্যালোচনা বা রায় প্রস্তুত করা এবং তাতে দস্তখত করার অধিকার হারান, আশা করি বিচারকগণ আইনের প্রতি শ্রদ্ধা রেখে এমন বেআইনি কাজ থেকে বিরত থাকবেন।’ (দেখুন সুপ্রিম কোর্ট ওয়েবসাইট)। সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক বিচারপতি হিসেবে অবসর নেয়ার আগে থেকেই প্রধান বিচারপতিকে পর্যুদস্ত ও অপদস্থ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। তিনি হয়তো ভুলে যাচ্ছেন যে, অবসরের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক মাত্র। যেভাবে তিনি আদালতকেও পর্যুদস্ত ও অপদস্থ করে চলেছেন তা ঘোরতর আদালত অবমাননা। মাহমুদুর রহমান ছয় মাস অন্যায়ভাবে শাস্তি ভোগ করে আসবেন আর শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নেয়া হবে না, বিচার বিভাগ এই দ্বৈত নীতি গ্রহণ করতে পারে না। টেলিভিশনেও এই সাবেক বিচারপতি বিতর্কিত বক্তব্য রেখেছেন। বিতর্কিত বক্তব্য রাখা অসুবিধা নয়; টেলিভিশনে অনেকেই অনেক স্টুপিড মন্তব্য করে থাকেন। শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকও করতে পারেন, সেটা তার মতপ্রকাশের অধিকার। কিন্তু যে বক্তব্য প্রধান বিচারপতিকে জনসমক্ষে অপদস্থ করে ও জনগণকে বিচারব্যবস্থার প্রতি সামগ্রিকভাবে তুমুল অবিশ্বাসী করে তোলে সেটা অবশ্যই আদালত অবমাননা। মাহমুদুর রহমান ও বাংলাদেশের অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ নাগরিকের ক্ষেত্রে আদালতের ভূমিকা এক রকম আর সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরীর জন্য তো সেটা ভিন্ন হতে পারে না। দুই জনগণের বৃহত্তর স্বার্থের দিক থেকে তাকালে ক্ষমতাসীনদের বরকন্দাজ বিভিন্ন রঙ ও পোশাকের সুবিধাবাদী ব্যক্তি বা গোষ্ঠীর অন্তর্দ্বন্দ্ব বিচারব্যবস্থার জন্য অবমাননাকর হলেও এসব কিছুতে শেষমেশ বাংলাদেশের জনগণের লাভ ছাড়া ক্ষতি নেই। বিচার ও শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে যেসব সমালোচনা এত দিন করা হয়েছে তার ক্ষত ও দুর্গন্ধই আসলে এখন ছড়াতে শুরু করেছে। যতই তা প্রকাশ্য হতে থাকবে ততই জনগণ বুঝতে পারবে বিদ্যমান ব্যবস্থার মধ্যে সংস্কারের সুযোগ নেই বললেই চলে। এ দিক থেকে এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী ও বিচারপতি এস কে সিনহার দ্বন্দ্ব আমাদের জন্য বিচারব্যবস্থা, রাজনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থার জন্য শিক্ষণীয় বিষয় হয়ে উঠেছে। কিন্তু বিষয়টা শুধু আদালত অবমাননা, নির্বাহী বিভাগ ও বিচার বিভাগের সম্পর্ক এবং সামগ্রিকভাবে বিচারব্যবস্থার ক্ষয়ের বিচারের প্রশ্ন নয়। দু-একজন বিচারকের নীতিনৈতিকতার প্রশ্নও বটে। বাংলাদেশের সাধারণ মানুষকে একটি প্রশ্ন করি। বাংলাদেশ একটি স্বাধীন ও সার্বভৌম দেশ। কিন্তু সেই দেশের সুপ্রিম কোর্টে কেউ যদি তার বিদেশী নাগরিকত্ব লুকিয়ে রেখে অতিশয় প্রভাবশালী বিচারক হয়ে বসেন তাহলে তার কী শাস্তি হওয়া উচিত? কোনো দেশ কি তা বরদাশত করবে? কোনো দেশ কি তার সুপ্রিম কোর্টে কোনো বিদেশী বিচারক মেনে নেবে? অবশ্যই না। এখন ধরা যাক, কোনো একজন বিচারক সম্পর্কে এই ধরনের অভিযোগ উঠল। সুবিচারের খাতিরে আমরা ধরে নিচ্ছি এই অভিযোগ মিথ্যাও হতে পারে। তাহলে এই ক্ষেত্রে সরকার, বিচারব্যবস্থা ও গণমাধ্যমের ভূমিকা কী হতে পারে? অবশ্যই এই অভিযোগের সত্য-মিথ্যা যাচাই করা। সত্যতাসাপেক্ষে তাকে দ্রুত অপসারণ করা। যদি কেউ সত্য গোপন রেখে সুপ্রিম কোর্টের বিচারক হয়ে থাকেন তার শাস্তির ব্যবস্থা করা। কিন্তু বাংলাদেশ বিচিত্র দেশ। সাবেক বিচারপতি এ এইচ এম শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিক সম্পর্কে এসব গুরুতর অভিযোগ উঠার পরও তার কোনো তদন্ত হয়নি। দৈনিক পত্রিকা আমার দেশে এ সম্পর্কে প্রতিবেদন প্রকাশিত হয়েছিল। বিলাতে তার বাড়ি ও দুর্নীতি সম্পর্কে কিছু তথ্য তারা প্রকাশ করেছিল। রাজনৈতিক বিরোধ ও বিদ্বেষ ছাড়াও এসব কারণে দৈনিক আমার দেশের সম্পাদক মাহমুদুর রহমানকে চরম মূল্য দিতে হয়েছে। তাকে আদালত অবমাননার দায়ে যে বেঞ্চ শাস্তি দিয়েছিল সেখানে সাবেক বিচারপতি শামসুদ্দিন চৌধুরী মানিকও ছিলেন। বাংলাদেশে ‘আদালত অবমাননা’ সংক্রান্ত কোনো আইন নেই। সে দিক থেকে ঔপনিবেশিক আইনের ভিত্তিতে আদালত অবমাননার বিচার চলতে পারে না। ঔপনিবেশিক আইন চিন্তা, বিবেক ও মতপ্রকাশের স্বাধীনতা রক্ষা করে না, বরং তা দমন করার কাজেই ব্যবহার করা হতো। সেই আইন দিয়ে একটি স্বাধীন দেশে চিন্তা, বিবেক ও মতপ্রকাশসংক্রান্ত মামলার সিদ্ধান্ত কিভাবে বিচারকেরা নিচ্ছেন? তাহলে তর্ক করা যায় ঔপনিবেশিক আইনের অধীনে স্বাধীন দেশের নাগরিকদের যে বিচার বিচারকেরা করেছেন তা রাজনৈতিক ও সাংবিধানিক চেতনার বিরোধী। ঔপনিবেশিক আইনের অধীনে যেসব রায় হয়েছে তা অবৈধ। অভিযুক্তকে ‘পরাধীন’ ব্যক্তি হিসেবে গণ্য করা হয়েছে, স্বাধীন দেশের চিন্তা ও বিবেকসম্পন্ন স্বাধীন নাগরিক হিসেবে বিবেচনা করা হয়নি। লিগ্যাল সাবজেক্ট হিসেবে নাগরিকদের যে স্তরে বিচারকেরা পর্যবসিত করেছেন তারা কি তা করতে পারেন? এ ছাড়াও আরেকটি গুরুতর আইনি বা সাংবিধানিক তর্ক মাহমুদুর রহমানসংক্রান্ত আদালত অবমাননার রায়ে উঠেছে। অপরাধের শাস্তি কী হবে তা নির্ধারণ বিচারকের এখতিয়ার নয়। আইনের অনুপস্থিতিতে যদি শাস্তি সুনির্দিষ্ট না থাকে তাহলে বিচারপ্রক্রিয়া বিচারকদের বৈচারিক স্বেচ্ছাচারে পর্যবসিত হতে পারে না। এ ছাড়া অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী কোন অপরাধে কতটা শাস্তি হবে সেটা নির্ণয়ের অধিকারও বাংলাদেশের সংবিধান বিচারকদের দেয়নি। মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে ২০১০ সালে আনা অভিযোগে যে রায় দেয়া হয়েছিল তা বিচারকদের ব্যক্তিগত ক্রোধের বহিঃপ্রকাশ কি না তা তর্ক আকারে যেমন রয়ে গিয়েছে তেমনি মাহমুদুর রহমানের রায়ে বিচার বিভাগ সংবিধানে দেয়া ক্ষমতার বাইরে কাজ করেছেন কি না সেটাও অতিশয় গুরুত্বপূর্ণ তর্ক আকারে রয়ে গিয়েছে। আমরা তা উপেক্ষা করতে পারি না। ইনসাফ নিশ্চিত করা না হলে তুষের আগুনের মতো তা থেকে যাবে। এজলাসে বসে রায় দিলেই তার জের শেষ হয় না। আইন কিংবা বিচার সমাজ ও রাজনীতি থেকে বিচ্ছিন্ন কিছু নয়। একজন নাগরিককে শাস্তি দিতে গিয়ে ন্যায়বিচার বিঘিœত হলে তা দ্বিগুণ শক্তি হয়ে বেইনসাফির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ায়। মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে রায়ের জেরও বাংলাদেশে কাটেনি। আদালত অবমাননার প্রসঙ্গ যেহেতু নাগরিকদের মানবিক অধিকারের প্রশ্নের সাথে ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত তাই এই রায়টি বারবারই ইতিহাসের কাঠগড়ায় উঠে দাঁড়াবে এবং আবার ইনসাফ নিশ্চিত করার জন্য ফরিয়াদ জানাতে থাকবে। ঠিক। মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার ওপরের ব্যাখ্যা অনুযায়ী শাস্তি অসাংবিধানিক। আদালত অবমাননার বিরুদ্ধে পদক্ষেপ নেয়ার অধিকার বিচারকদের আছে। অবশ্যই। কিন্তু অপরাধের মাত্রা অনুযায়ী শাস্তি নির্ণয়ের অধিকার তাদের নেই। কিসের ভিত্তিতে মাহমুদুর রহমানের ছয় মাসের কারাদণ্ড হলো? অপরাধের গুরুত্ব অনুযায়ী শাস্তির মাত্রা নির্ণয়ের অধিকার এখতিয়ার একান্তই জাতীয় সংসদ বা রাষ্ট্রের আইন প্রণয়নী বিভাগের। এ ক্ষেত্রে জাতীয় সংসদ তো কোনো আইনই প্রণয়ন করেনি। কিন্তু বিচারকেরা প্রায়ই নিজেদের জাতীয় সংসদের ঊর্ধ্বে ভাবতে পছন্দ করেন। সংবিধানে ‘ইনহেরেন্ট পাওয়ার’ নামক একটি ধারণা আছে বলে অনেকে মনে করেন। এই ইনহেরেন্ট পাওয়ার খোদায়ী ক্ষমতার সমতুল্য। বিচারক যা খুশি তাই শাস্তি দিতে পারেন। কিন্তু ইনহেরেন্ট পাওয়ারের অর্থ এমন নয় যে, কোনো আইন না থাকলে আদালত নিজেই নিজের ক্ষমতাবলে যা খুশি আইন তৈরি করতে পারে। সওয়াল জবাবের পরিপ্রেক্ষিতে সংবিধান ও আইনের ব্যাখ্যা করার ক্ষমতা উচ্চ আদালতের। কোর্ট অব রেকর্ড হিসেবে যা থেকে যায়। আইনের ব্যাখ্যা হিসেবে আদালতের এখতিয়ারের মধ্যে ‘আইন’ হয়ে হাজির থাকে। যাকে কেইস ল, প্রিসিডেন্স ইত্যাদি নানান নামে অভিহিত করা হয়। বিভিন্ন আইনের মধ্যে সমন্বয় বা বিরোধ থাকলে এবং তা আদালতে মীমাংসার সুযোগ থাকলে বৈচারিক ক্ষমতাবলে তা মীমাংসার ক্ষমতাকেও অনেকে আদালতের ইনহেরেন্ট পাওয়ার বলে মানেন। এত দূরই বড়জোর। ইনহেরেন্ট পাওয়ার নিয়ে অন্যত্র ভিন্নভাবে আমরা বিস্তৃত আলোচনা করতে পারি। কিন্তু আদালত অবমাননার অজুহাতে কোনো আইন না থাকা অবস্থায় কাউকে ছয় মাসের শাস্তি দেয়ার ঘটনা বাংলাদেশে ঘটেছে। অথচ ইনহেরেন্ট পাওয়ারের অজুহাত দিয়ে বিচারক সেই শাস্তি দিতে পারেন না। এটা তার এখতিয়ারের জায়গা নয়। যেহেতু বাংলাদেশে বৈচারিক যুক্তিবিদ্যা (jurisprudence), দর্শন কিংবা রাষ্ট্রনীতি নিয়ে শক্তিশালী সামাজিক-রাজনৈতিক বিতর্ক নেই, বহু গুরুত্বপূর্ণ ও সংবেদনশীল বিষয় অস্পষ্ট ও অপরিচ্ছন্ন রয়ে গিয়েছে। কিছু বিচারক তার সুযোগ গ্রহণ করতে পারছেন। মাহমুদুর রহমানকে শাস্তি দেয়ার ক্ষেত্রে আমরা দেখেছি কিভাবে ব্যক্তিগত ক্রোধ বিচারপ্রক্রিয়াকে ন্যায়বিচার থেকে বিচ্যুত করে। কিছু বিচারক তাকে ‘চান্স এডিটর’ মন্তব্য করেছিলেন এবং আদালত অবমাননার জন্য দীর্ঘ দিন কারাগারে পচতে পাঠিয়েছিলেন। বাংলাদেশে নাগরিক সমাজ বা তথাকথিত সিভিল সোসাইটি নামক কিছু যে নেই সেটা তখন থেকেই আরো স্পষ্ট হয়ে গিয়েছিল। কারণ এই অন্যায়ের প্রতিবাদ যেভাবে হওয়ার কথা ছিল সেভাবে হয়নি। মাহমুদুর রহমান ‘ইসলামপন্থী’ এই অভিযোগে সংবিধান, আইন ও বিচারব্যবস্থার এই সব নানাবিধ ঘাটতি উপেক্ষা করা হয়েছে। তাকে শাস্তি দেয়ার জন্য ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের আনন্দ আমরা তখন প্রত্যক্ষ করেছি। যে তলোয়ার অন্যের মাথা কাটে, একদিন তার কোপ আমার ঘাড়েও পড়তে পারে এই সাধারণ কাণ্ডজ্ঞানের প্রকট অভাব দেখে অবাক হয়েছি। কিন্তু এটাই বাংলাদেশ। আজ দেখছি, যেসব বিচারক মাহমুদুর রহমানকে শাস্তি দিয়ে পুলকিত হয়েছিলেন আজ তারাই পরস্পরের সাতে দ্বন্দ্বে লিপ্ত। প্রহসন বটে! আদালত অবমাননা খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। বিশেষত যারা সাংবাদিক ও লেখালিখির সাথে জড়িত তাদের জন্য সাংবিধানিক ও নাগরিক অধিকারের দিক থেকে চিন্তা ও মতপ্রকাশের সীমা ও সম্ভাবনা পরিষ্কার করা সংসদ ও বিচার বিভাগ উভয়েরই কর্তব্য। আদালত অবমাননা মামলায় মাহমুদুর রহমানের শাস্তি বাংলাদেশের আইন ও বিচার বিভাগের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। প্রসঙ্গটি আবার সে কারণেই এখন তুলেছি। সেই মামলার বেঞ্চে বর্তমান প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহাও হাজির ছিলেন। তিনিও এই দায়ের বাইরে নন। এখন বিচারকদের সংবিধান বিরোধী কাজের কথা যদি তিনি তুলেই থাকেন তাহলে তিনিও বা দায় এড়াবেন কিভাবে? এই প্রশ্নটুকু প্রধান বিচারপতির বিবেকের কাছে পেশ রাখছি। এর বেশি কথা বাড়াতে চাই না। কারণ তিনি যদি আন্তরিক উপলব্ধি থেকে এখনকার কথাগুলো উচ্চারণ করে থাকেন তাহলে তাকে শক্তভাবে সমর্থন করা আমি আমার নাগরিক কর্তব্য বলে মনে করি। তিন অবসর গ্রহণ করার পর পরই সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিগণ সাধারণ নাগরিক হয়ে যান এবং তারা আর শপথের অধীন থাকেন না। তাই অবসর গ্রহণের পর আদালতের নথি নিজের নিকট সংরক্ষণ, পর্যালোচনা বা রায় প্রস্তুত করা এবং তাতে দস্তখত করার অধিকার তারা হারান। সে কারণে অবসরে যাওয়ার পর রায় লেখাকে প্রধান বিচারপতি অসাংবিধানিক বলেছেন। তার এই সঠিক অবস্থানের যারা সমালোচনা করছেন তাদের যুক্তি একটাই। বিচারক যখন রায় দিয়েছিলেন তখন তিনি শপথের অধীনে ছিলেন। অতএব এরপর অবসরে গিয়ে রায় লিখলে তা অসাংবিধানিক হবে না। কিন্তু প্রধান বিচারপতি তো তা নিয়ে তর্ক করছেন না। শপথের অধীনে দেয়া সংক্ষিপ্ত রায়কে তিনি অসাংবিধানিক বলছেন না। তিনি বলছেন, আদালতের নথি সরকারি দলিল, অবসরে যাওয়া বিচারক নিজের বাড়িতে রাখেন কোন অধিকারে? এগুলো পাবলিক ডকুমেন্ট। কিংবা তার পর্যালোচনা করতে পারছেনই বা কিভাবে? এবং শপথের বাইরে থেকে রায়ও বা লিখছেন কোন সাংবিধানিক বা আইনি অধিকারে? বিশেষত এমন সময় যখন রাষ্ট্রের গুরুত্বপূর্ণ দলিল সংরক্ষণের শপথ থেকে তিনি মুক্ত। এই ব্যাপারে তার আর কোনো দায় থাকে না। যারা অন্য দেশের উদাহরণ দিচ্ছেন তারা সুনির্দিষ্টভাবে কোন দেশে কোথায় বিচারপতিরা অবসরে যাবার পরে কিভাবে রায় লিখেছেন তার কোনো উদাহরণ দেননি। বাংলাদেশে এর আগের বিভিন্ন বিচারপতি ও এই কাজ করেছেন বলা হচ্ছে। আগের বিচারপতিরা অসাংবিধানিক কাজ করেছেন বলে তা স্র্রেফ বিচারপতিদের স্বেচ্ছাচার হিসেবেই বিবেচনা করতে হবে। প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহার বক্তব্য এতে এক তিলও বাতিল হয় না। আগের বিচারপতিরা ভুল করলে আমাদের সেই ভুল করে যেতে হবে তার কোনো যুক্তি নেই। কোনো বিচারপতি অবসর গ্রহণের পর তিনি একজন সাধারণ নাগরিক হিসেবে গণ্য হন বিধায় তার গৃহীত শপথও বহাল থাকে না। তো তিনি যখন রায় দিয়েছিলেন তখন তিনি শপথের অধীন ছিলেন তাই অবসরে অসম্পূর্ণ রায় লিখবেন এই যুক্তি যারা দিচ্ছেন তাদের যুক্তি কাণ্ডজ্ঞানপ্রসূত মনে হচ্ছে না। ধরুন তর্কের খাতিরে মানা গেল যে তারা অবসরে গেলে রায় লিখতে পারবেন। কিন্তু প্রধান বিচারপতি এস কে সিনহা বিচারপতিদের স্বাক্ষর করা নিয়েও প্রশ্ন তুলছেন। বাড়িতে বসে অবসরে লেখা রায়ে যখন অবসরপ্রাপ্ত বিচারক স্বাক্ষর করেছিলেন তখন কি তিনি শপথের অধীন? নাকি অধীন নন? স্বাক্ষরের তারিখ তিনি কী দেবেন? শপথ থেকে অবমুক্ত হওয়ার পরের তারিখ নাকি যখন তিনি শপথের অধীনে ছিলেন সেই তারিখ? যদি শেষেরটা করেন সেটা হবে শুধু অসাংবিধানিক নয়, একইভাবে দুই নম্বরি কাজ। কিভাবে একজন সাধারণ নাগরিক রায়ে স্বাক্ষর দিচ্ছেন? আর তা রাষ্ট্রের কাছে বলবৎযোগ্য বলে গৃহীত হচ্ছে? কাণ্ডজ্ঞানেই বোঝা যায় প্রধান বিচারপতি সঠিক বলেছেন। এতে কি বৈচারিক বা আইনি জটিলতা তৈরি হবে? অবশ্যই হবে। কিন্তু সেটা ভিন্ন তর্ক। আর সেই তর্ক ইতোমধ্যে শুরু হয়ে গিয়েছে। কী ধরনের জটিলতা তৈরি হবে কিংবা ইতোমধ্যে হয়েছে সেই তর্কে আমি এখন এখানে যাচ্ছি না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারসংক্রান্ত রায় এই ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু। ২০১২ সালের ১৬ সেপ্টেম্বর প্রকাশ হয়েছিল তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাতিলের রায়। এই রায়টি লিখেছিলেন বিচারপতি এ বি এম খায়রুল হক। অবসরে যাওয়া বিচারপতির রায় লেখা নিয়ে সেই সময় দৈনিক আমার দেশ প্রশ্ন তোলে। তখন দৈনিক আমার দেশের সাংবাদিক অলিউল্লাহ নোমান সিনিয়র আইনজীবী বিচারপতি টি এইচ খানের বরাতে জানিয়েছিলেন, এটা অবৈধ কাজ। বিচারপতিরা দায়িত্ব গ্রহণের আগে শপথ নেন। এই শপথ নেয়া হয় সংবিধানের আলোকে। যত দিন দায়িত্বে থাকেন তত দিন শপথের আওতায় তাদের কাজ করতে হয়। অবসরে চলে যাওয়ার পর তারা শপথের আওতামুক্ত। তখন তিনি সাধারণ নাগরিক। সুতরাং শপথের আওতামুক্ত কোনো ব্যক্তি রায় লিখতে পারেন না। কারণ তিনি আর সাংবিধানিক বাধ্যবাধকতার মধ্যে থাকেন না। তবে সাংবিধানিক বা আইনি জটিলতা তৈরি হবে বলে ক্ষমতাসীনদের বরকন্দাজরা যেসব কূটতর্ক করছে আসলে তার কোনো ভিত্তি নেই। কারণ একটি নির্বাচিত সংসদ অনায়াসেই দুই-তৃতীয়াংশ সদস্যের সম্মতির ভিত্তিতে বিতর্কিত বিষয় সমাধান করতে পারে। কিন্তু তারা জানে বর্তমান সংসদ অনির্বাচিত। এর নৈতিক বা আইনি ভিত্তি নেই। যে রায়ের ভিত্তিতে ক্ষমতাসীনেরা ক্ষমতায় এসেছে সেটাই প্রধান বিচারপতির বক্তব্যে প্রশ্নবোধক ও অসাংবিধানিক হয়ে পড়েছে। এদের তেলেবেগুনে গোস্বা হওয়ার কারণ এটাই। তারা বিতর্কিত সংসদে এর সমাধান দিলেও তা গ্রহণযোগ্য হবে না। প্রধান বিচারপতি এখন যা বলছেন তা আসলে নতুন কিছু নয়। তার বলাটাই নতুন। জানি না তিনি তার বিবেকের তাগিদ থেকে কথাগুলো বলছেন কি না। যদি বলে থাকেন তাহলে তার উচিত বিচার বিভাগীয় উদ্যোগে মাহমুদুর রহমানের জামিন কেন হচ্ছে না তার খোঁজ নেয়া। মাহমুদুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তার বিচার হোক অসুবিধা নেই। কিন্তু কোনো বিচারপতির ব্যক্তিগত ক্রোধের কারণে যদি নাগরিকদের ওপর অন্যায় করা হয় তাহলে তা প্রশমনের দায় প্রধান বিচারপতিরও বটে। প্রধান বিচারপতির উদ্যোগ নেয়ার মধ্য দিয়েই আমরা বুঝব তিনি আইন বা সাংবিধানিক বৈধতা বা অবৈধতার তর্ক ছাড়াও নীতি ও ইনসাফের প্রশ্নে আন্তরিক। সমাজ ও রাষ্ট্রের স্থিতিশীলতার জন্য যা জরুরি।নয়াদিগন্ত পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: হাতির ডিম Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com হাতির ডিম 27 August 2016, Saturday সাহিত্য ও দর্শনের সঙ্গে একটি জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সম্পর্ক খুবই নিবিড়। কিন্তু এই নিবিড় সম্পর্কের কায়কারবার প্রায়ই অদৃশ্যে ঘটে। অর্থাৎ কীভাবে ঘটছে সেটা হাতেনাতে ধরিয়ে না দিলে, কিংবা সজ্ঞানে বুঝতে না চাইলে ধরা পড়ে না। দর্শন এক কিম্ভূত ব্যাপার। বিজ্ঞান কিংবা সাহিত্যের মতো সুনির্দিষ্ট কোনো বিষয় নিয়ে দর্শন চর্চা করে না; দর্শন বরং সক্রিয় ও সপ্রাণ চিন্তার খোলা ময়দানের মতো। সেখানে সক্রিয় ও সপ্রাণ চিন্তা বিদ্যমান বিষয়াদির পর্যালোচনা যেমন করে, তেমনি নিজের জন্য নিজে নতুন বিষয় প্রয়োজনে কিংবা চিন্তা প্রক্রিয়ার নিজস্ব তাগিদে ধার্য করে নিতে পারে। সর্বোপরি নিজের চিন্তা নিজেই পর্যালোচনা করতে পারা- এখানে দর্শনের অর্থাৎ সপ্রাণ ও সক্রিয় চিন্তার গৌরব নিহিত। প্রতিটি শাস্ত্র বা বিজ্ঞানের গোড়ায় চিন্তার নানান অনুমান কাজ করে। সিদ্ধান্তে পৌঁছানোর ও সিদ্ধান্ত নেয়ার বিশেষ পদ্ধতিও থাকে। যেমন, উদ্ভিদবিজ্ঞানের একটি প্রাথমিক কাজ হচ্ছে গাছপালা শনাক্ত করা এবং তাদের শ্রেণীকরণ। এই শনাক্তকরণ আর শ্রেণীকরণের পদ্ধতি দিয়ে জ্যামিতির চর্চা চলে না। পদার্থবিজ্ঞানের গতিবিদ্যা নিরূপণ কিংবা বস্তুর গতির ব্যাখ্যা করা যায় না। গ্রহবিজ্ঞান দূরের গ্রহ-নক্ষত্রের কক্ষপথ হিসাব কষে, আঁকে, তার ভিত্তিতে সৌরজগতে পৃথিবীর অবস্থান সম্পর্কে আমরা জানতে পারি। সেই পদ্ধতি দিয়ে ‘তুমি আজ কত দূরে, তুমি আজ কত দূরে...’ গানটি বিলাপ করে গাইলেও বিরহের দূরত্ব মাপা সম্ভব নয়। রবীন্দ্রনাথের ‘তুমি কি কেবলি ছবি, শুধু পটে লিখা...’ গানটি সারারাত দূর নক্ষত্রের দিকে তাকিয়ে কান্নাকাটি করে গাইলে খারাপ হবে না। কিন্তু তাতে সুদূর নীহারিকায় যারা আকাশের নীড়ে ভিড় করে আছে সেই অবধি পৌঁছানো যাবে না। তার জন্য মহাকাশ যাত্রীবাহী মহাকাশযান আবিষ্কারের জন্য অপেক্ষা করতে হবে। যেসব আঁধারের যাত্রী গ্রহ হয়ে, তারা হয়ে, রবি হয়ে দিনরাত্রি আলো হাতে চলেছে তো চলেছে তাদের আঁধার, আলো কিংবা গতিপথ সম্পর্কেও কিছুই জানা যাবে না। রবীন্দ্রনাথের গানে পৃথিবী থেকে নক্ষত্রের দূরত্ব কমবে কি? কমবে না। গ্রহ-নক্ষত্র সম্পর্কে গ্রহ বিজ্ঞান ছাড়া আমাদের জ্ঞানার্জনের অন্য কোনো সুবিধা নাই। কিন্তু রবীন্দ্রনাথকে আমরা তাই বলে বাদ দেব না। কারণ তিনি সাহিত্য। সাহিত্যের সঙ্গে এখানে দর্শনের মিল আছে। দর্শনের কোনো বিষয় নাই, আগেই তৈরি থাকা সুনির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে চিন্তা বা চর্চা দর্শনের কাজ নয়। সাহিত্যিক যে কোনো বিষয় নিয়ে লিখতে পারেন, এই অর্থে সাহিত্যের কোনো আগাম নির্ধারিত বিষয় নাই। তর্ক করা যায়, কল্পনা সাহিত্যের বিষয়। কিন্তু দর্শনের আগাম তৈরি বিষয় নাই বলার অর্থ এই নয় যে, সাহিত্যের মতো দর্শনের কাজ কল্পনা চর্চা করা। দর্শনে কল্পনা নাই বলা যাবে না। সক্রিয় ও সপ্রাণ চিন্তা মানে কল্পনা, ইচ্ছা, সংকল্প, বাসনা, বুদ্ধি ইত্যাদি মানবীয় বৃত্তিচর্চার সংক্ষিপ্ত ডাকনাম। চিন্তা মানে বুদ্ধির চর্চা, বুদ্ধির ব্যবহার, এটা আধুনিককালের সংকীর্ণ সংজ্ঞা। আজকাল বিশ্ববিদ্যালয়ে দর্শন নামে একটা বিভাগ আছে। ফলে এ ধারণা অনেকেরই বদ্ধমূল যে দর্শনও বুঝি বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে পাঠ করার মতো পাঠ্যবস্তু। তার বিষয় বুঝি সাহিত্য, উদ্ভিদবিজ্ঞান, পদার্থবিজ্ঞান, অর্থশাস্ত্র, রাষ্ট্রবিজ্ঞান ইত্যাদি চর্চার জন্য আগাম তৈরি করে রাখা আরেকটি বিষয় মাত্র, যার সঙ্গে অন্যান্য বিষয়ের কোনো সম্পর্ক নাই। দর্শন বুঝি আলাদা একটি শাস্ত্র, অন্যান্য বিষয়ের মতোই স্বতন্ত্র একটি বিষয়। আসলে তা কিন্তু মোটেও নয়। যে কোনো বিষয়ই দর্শনের বিষয় হতে পারে। ঠিক। যে কারণে একসময় পদার্থবিজ্ঞান, গণিত, জ্যামিতি, উদ্ভিদবিজ্ঞান, রসায়ন শাস্ত্র ইত্যাদি ‘দর্শন’ নামেই অভিহিত হতো। কিন্তু দর্শনের আরেকটি দিকও আছে, সেখানেই বোধহয় দর্শনের স্বাতন্ত্র্য ভালোভাবে বোঝা যায়। সেটা হল, যে কোনো বিষয়ই যেমন দর্শনের পর্যালোচনার অধীন হতে পারে, তেমনি আবার বিদ্যমান কোনো আগাম তৈরি বিষয় নিয়ে দর্শন নাও মাথা ঘামাতে পারে। সেসব আদৌ দর্শনের বিষয় নাও হতে পারে। দর্শন এমন সব বিষয়ের অবতারণা করে, যা আমাদের অপরিচিত, অজানা, অধরা। বিদ্যমান শাস্ত্র, বিজ্ঞান বা বিষয়কে দর্শন এমনভাবে অতিক্রম করে যায় বা যেতে সক্ষম যে সক্রিয় ও সপ্রাণ চিন্তাকে কোনো বিদ্যমান বিষয়ের খাপে ফেলা কঠিন, এটাই দর্শন বারবার প্রমাণ করে। হয়তো দর্শনের বিষয়কে আগাম তৈরি খাপে কখনোই ফেলা যায় না। দুই বিজ্ঞান তার উন্মেষের যুগে মানুষের জ্ঞানের অনুসন্ধিৎসার দায় মিটিয়েছে। আধুনিক বিজ্ঞানের রমরমার যুগে তাই প্রশ্ন উঠেছিল, আলাদা করে দর্শনের কোনো প্রয়োজনীয়তা আছে কি? আধুনিক বিজ্ঞানই তো আমাদের সব প্রশ্নের উত্তর দিতে পারছে। আধুনিক বিজ্ঞানের রমরমার যুগে এটা বেশ রমরমা তর্ক ছিল। কিন্তু সেটা বেশিদিন টেকেনি। বিজ্ঞানের উন্মেষের পাশাপাশি দার্শনিকরা বলতে শুরু করলেন, এমন অনেক বিষয় আছে যার উত্তর আধুনিক বিজ্ঞানের পক্ষে সম্ভব নয়। বিজ্ঞান দেশকালের অধীন সত্তাকে ‘বস্তু’ গণ্য করে তাকে মানুষের বুদ্ধির সীমার মধ্যে শর্তসাপেক্ষে নির্ণয় করতে পারে বটে; কিন্তু সেটা বুদ্ধির সত্য মাত্র, সেই সত্য নির্ণয়ে বুদ্ধি নিজের উপাদানও যোগ করেছে। কিন্তু যা দেশকালের অধীন নয় সেটা বিজ্ঞানেরও বিষয় নয়। যেমন, ‘আল্লাহ’, ‘আত্মা’, ‘পরকাল’ ইত্যাদি। সেসব বিষয় পর্যালোচনার পদ্ধতি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে সম্ভব নয়। তার বিচার আলাদা। এই লড়াই লম্বা দিন ধরে চলেছে। শেষাবধি বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিকে তার সীমা স্বীকার করে নিতে হয়েছে। কিংবা গোঁয়ারের মতো বলতে হয়েছে, যা প্রত্যক্ষ নয় তা অবাস্তব, অসত্য। কিন্তু তাতেও গোঁয়ার মেনে নিচ্ছে প্রত্যক্ষের বাইরের বিষয় তার জন্য অনধিকার চর্চা মাত্র। ফলে দর্শনের ভূমিকাও আগের চেয়ে স্পষ্ট হয়েছে। সাধারণভাবে বুদ্ধিসহ মানুষের সব বৃত্তির পর্যালোচনা যেমন দর্শনের দায় হিসেবে এখন মান্য, একইভাবে বুদ্ধির হিম্মতের বাইরে যে অধরা জগৎ তার সঙ্গে সম্বন্ধ রচনার বিবিধ দিকদর্শনের অনুসন্ধিৎসার- অর্থাৎ সজ্ঞান, সচেতন, সপ্রাণ ও সক্রিয় চিন্তার জিজ্ঞাসার ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। অধরার আকর্ষণে এমন সব বিষয় দর্শন অবতারণা করে যার কোনো সরাসরি উপযোগিতা নাই, কিংবা আগামীতে আদৌ সেই চিন্তা মানুষের কাজে লাগবে কিনা সেটাও হলফ করে বলা কঠিন। এখানে সাহিত্যের সঙ্গে দর্শনের আশেকানি বা মহব্বতের জায়গা। সাহিত্য বা দর্শনের উপযোগিতা থাকতে পারে; কিন্তু বিজ্ঞানচর্চার মতো উপযোগিতা দিয়ে সাহিত্য বা দর্শনের ভালোমন্দ নির্ণয় করা অসম্ভব। উপযোগিতা নাই বলে মানুষ কি তাহলে দর্শন চর্চা বাদ দেবে? কিংবা সাহিত্য? দর্শনকে এই প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হয়েছে। সত্য নির্ণয়ের পদ্ধতি এবং বুদ্ধির ভূমিকাসহ মানুষের বিভিন্ন বৃত্তির সীমা ও সম্ভাবনা নিয়ে বিজ্ঞানের সঙ্গে দর্শনের তর্ক নানান ডালপালায় নানান দিকে যেমন বিস্তৃত, সাহিত্যকে সেই পরিশ্রম করতে হয়নি। সাহিত্য আগাম মেনে নেয় তার কাজ দৃশ্যমান জগতের সত্যমিথ্যা নির্ণয় নয়, বরং মানুষের কল্পনা, ইচ্ছা ও বাসনার সঙ্গে সম্বন্ধ স্থাপন। সাহিত্যের উপযোগিতা নাই, এতে সাহিত্যের বিশেষ ক্ষতিবৃদ্ধি নাই। কিন্তু দর্শনের জন্য এই তর্কের উত্তর অবশ্য সোজা। আসলে প্রশ্ন করা হচ্ছে, উপযোগিতা না থাকলে মানুষ কি তাহলে চিন্তা চর্চা করার কাজও বাদ দেবে? মানুষ কি চিন্তা করবে না? নিজের চিন্তার পর্যালোচনাও কি মানুষকে বাদ দিতে হবে? চিন্তা মানুষের স্বভাব। চিন্তাহীনতা তাহলে কীভাবে মানুষের পক্ষে সম্ভব? প্রত্যেক জীবন্ত মানুষ কোনো না কোনোভাবে চিন্তা করে, ফলে দর্শন চর্চা কোনো হাওয়াই কারবার নয়, চিন্তার স্বাভাবিক তাগিদ থেকেই তার উদগিরণ বা উজ্জীবন ঘটে থাকে। বারবারই। তাছাড়া দৈনন্দিন নানান বিষয়ে মানুষকে সিদ্ধান্ত নিতে হয়, অনেক কিছুই তাকে নতুন করে ভাবতে হয়। তাহলে ভাবনা, ভাবুকতা, দার্শনিকতা ছাড়া ‘মানুষ’ নামক জীবেরও বা অর্থ কী? চিন্তা মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গি। এ কারণে অনেক দার্শনিকের দাবি, মানুষের চিন্তার বিকাশ দৈনন্দিন ভাষা চর্চার মধ্য দিয়ে ঘটে, যার কোনো বিকল্প নাই। শাস্ত্র বা বিজ্ঞান সেক্ষেত্রে চিন্তার বিকাশে প্রতিবন্ধক হয়ে উঠতে পারে। বাংলাদেশের সাধুসন্তরা যখন নিজেদের শাস্ত্রবিরোধী বলে থাকেন তখন ভাব বা দর্শন চর্চাকে সাধারণ মানুষের ভাষাচর্চার জগতে জীবন্ত রাখার স্বার্থে সে কথা বলেন। বাংলা ভাষায় দর্শন চর্চার সমৃদ্ধি সে কারণে ফকির-দরবেশ-বয়াতি-বাউলদের মধ্য দিয়েই ঘটেছে। শিক্ষিত শ্রেণীর অবদান ইউরোপের চর্বিত চর্বণ ছাড়া সেক্ষেত্রে নগণ্য। এই অতি সাধারণ সত্যটুকু বুঝলে আমরা বুঝব, বিজ্ঞান বলতে আমরা এখন যে চর্চা বুঝি সেটা চিন্তার এক বিশেষ ধরনের চর্চা মাত্র। সার্বজনীন কিছু নয়। কিন্তু চিন্তার এই বিশেষ ধরন মানুষের একমাত্র বা শেষ ধরন নয়। বিজ্ঞানও একরকম নয়। সার্বজনীন তো নয়ই। বিজ্ঞান মাত্রই ‘উচ্চমার্গের চিন্তা’র কোনো ধরন নয়, বিভিন্ন বিজ্ঞানের ভূমিকা বিভিন্ন রকম। তাদের ভূমিকার ক্ষেত্রেও হেরফের আছে। যেমন, আধুনিক বিজ্ঞানের ঐতিহাসিক ভূমিকা অনস্বীকার্য; কিন্তু সেখানে অবদান যেমন আছে তার ভয়ংকরবিনাশী রূপও আছে। পারমাণবিক বোমা, ইন্ডাস্ট্রিয়াল কায়দায় বিপুলসংখ্যক মানুষকে একসঙ্গে হত্যার কারিগরি আবিষ্কার, বোমা, ড্রোন বিমান দিয়ে নিরীহ নারী-পুরুষ-শিশু হত্যা, প্রাণের সংকেতসূত্রে বিকৃতি ঘটিয়ে প্রকৃতিবিনাশী জিএমও আবিষ্কার- এসব ভয়ানক চর্চা আধুনিক বিজ্ঞানের হাত দিয়েই ঘটেছে। ফলে নির্বিচারে আধুনিক বিজ্ঞানকে একাট্টা ভালো বলার কোনো যুক্তি নাই। প্রতিটি বৈজ্ঞানিক চিন্তা, চর্চা ও আবিষ্কারের পরিপ্রেক্ষিত আছে, দেশ, কাল, পাত্র ভেদ আছে। প্রতিটি আবিষ্কারের নির্মোহ পর্যালোচনা দরকার। সারকথা হল, বিজ্ঞান মানেই সার্বজনীন চিন্তা নয়। বিজ্ঞান সবার জন্য ভালো, সবসময়ই ভালো ভাবার কোনো কারণ নাই। ‘বিজ্ঞান’ নামক শব্দচিহ্ন দিয়ে চিন্তা চর্চার বিভিন্ন রূপের সাধারণীকরণ সে কারণে বিপজ্জনক। ‘বিজ্ঞান’ নামক সাধারণ ও সার্বজনীন ধারণাকে এ কারণে দর্শন- অর্থাৎ সজ্ঞান ও সক্রিয় চিন্তা মেনে নেয় না। এ রকম কোনো হাতির ডিম নাই। হাতির ডিম খেলে কী দুর্দশা হতে পারে সেটা গণবিদ্বেষী ও ধর্মবিদ্বেষী মুক্তচিন্তাবাদী, বিজ্ঞানবাদী বা মুক্তবুদ্ধিওয়ালা ব্লগারদের কাণ্ড দেখলে সহজেই বোঝা যায়। তাদের ধারণা বিজ্ঞান চর্চা মানেই ধর্মবিদ্বেষী, বিশেষত ইসলামবিদ্বেষী হওয়া। শাহবাগ আন্দোলনের মধ্যে গণতান্ত্রিক চিন্তা-চেতনা বিকাশের যে অপার সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল, ধর্মবিদ্বেষী ব্লগাররা তার গোড়ায় ডিনামাইট পুঁতে দিয়েছিল। যার পরিণতি আমরা জানি। শুধু উপযোগিতার তর্ক নয়, দর্শনের স্বাতন্ত্র্য কোথায় সেটা একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন। দর্শন কোথায় অন্যসব চর্চা ও জিজ্ঞাসার ক্ষেত্র থেকে আলাদা সেটা একটি দার্শনিক প্রশ্নও বটে। একসময় বৈজ্ঞানিক চর্চাও দর্শন চর্চা হিসেবেই অভিহিত হতো, কারণ তখন বৈজ্ঞানিক প্রেরণার গোড়ায় ছিল জ্ঞানের অনুসন্ধিৎসা এবং তার উদ্দেশ্যের মূলে ছিল সেই জিজ্ঞাসার পিপাসা মেটানো। বিজ্ঞানের সেই চরিত্র এখন প্রশ্নবিদ্ধ। বৃহৎ পুঁজি ও কর্পোরেশনের ভাড়া খাটা এখন বিজ্ঞানের প্রধান পেশা, বিজ্ঞানীর জীবিকা নির্বাহের প্রধান দায়। মানুষের স্বাভাবিক অনুসন্ধিৎসা বা জিজ্ঞাসা বিজ্ঞান বা বিজ্ঞানী উভয়ের প্রেরণা থেকে ক্ষয়ে গিয়েছে অনেক। বিদ্যমান ধারণা চিন্তার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করলে নতুন শব্দ বা ধারণা প্রবর্তনও দর্শনের কাজ। সেক্ষেত্রে সাহিত্য যখন সাধারণ মানুষের দৈনন্দিন ব্যবহার্য শব্দকে সাহিত্যে প্রচলিত করে তোলে, দর্শন সেই প্রচলন থেকে পর্যালোচনার জগতে অভিযোজনের জন্য জরুরি শব্দটি তুলে আনে। সাহিত্য ভাষাকে ভাঙ্গে, বিদ্যমান ভাষা ব্যবস্থার অন্তর্গত শৃংখলা ভেঙে ফেলার মধ্য দিয়ে নতুন চিন্তার সম্ভাবনা তৈরি করে। সাহিত্য এখানে সজীব ও সক্রিয় চিন্তা চর্চার জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করে দেয়। ষাট দশকে সাহিত্য, বিশেষত কবিতার সঙ্গে দর্শনের সম্পর্কের জায়গাটা আমাদের কাছে অনেক স্পষ্ট ছিল। সেই সময়ের কাব্য আন্দোলনের প্রধান স্লোগান ছিল, ‘প্রথম বিপ্লবের খুন বেরুবে ভাষা থেকে’। পরবর্তীকালে কাব্যের সঙ্গে চিন্তার সম্পর্ক অপরিচ্ছন্ন হয়ে গিয়েছে। এতটাই অপরিচ্ছন্ন যে, এটা কবিতার জন্য ভালো কী মন্দ হয়েছে সেটা নিয়ে কেউ তর্ক করার প্রয়োজনও বোধ করে না। সাহিত্য আমার আলোচনার জন্য প্রাসঙ্গিক, কিন্তু এখন মুখ্য নয়। তাই সাহিত্যের সঙ্গে দর্শনের এবং দর্শনের সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক নিয়ে দুই-একটি কথা বলে শেষ করব। তিন উপরে এত বড় ভূমিকা বা ভণিতা খুব পরিকল্পিতভাবে কিছু লিখব বলে লিখেছি তা নয়। আসলে বাংলাদেশে এখন লেখালিখি করা ঝুঁকিপূর্ণ কাজ। রাষ্ট্র বা সরকারের দিক থেকে ঝুঁকি আছে, এটা বলার অপেক্ষা রাখে না। বুঝতে পারি সরকার খুবই ভীত ও সন্ত্রস্ত। কেন ভীত সেটা বুঝি, কিন্তু লিখে কতটা বলা যাবে জানি না বলে লিখতে পারছি না। না লিখতে পারা লেখকের জন্য বেদনার। ঝুঁকিও বটে। কারণ পাঠকের প্রত্যাশা মেটানো হয় না। কিন্তু রাষ্ট্র বা সরকারের তরফে ঝুঁকির চেয়েও বাংলাদেশে আরও বড় ঝুঁকি তৈরি হয়ে রয়েছে। সে বিষয়েই বলতে গিয়ে অনেক কথা, দরকারি হলেও, বলেছি। একটি বিষয় উল্লেখ করে শেষ করি। বিভিন্ন রাজনৈতিক পরিভাষার সঙ্গে রাজনীতির সম্পর্ক সরাসরি। যেমন ‘গণতন্ত্র’, ‘সংবিধান’, ‘ক্ষমতা’ ইত্যাদি। এই প্রাথমিক সত্য বোঝা কঠিন নয়। কিন্তু তথাকথিত আধুনিক রাষ্ট্র গঠনের রাজনীতিতে আমরা যেসব পরিভাষা ব্যবহার করি তার অধিকাংশই অপরিচ্ছন্ন ও অস্পষ্ট। ‘গণতন্ত্র’, ‘সংবিধান’, ‘ক্ষমতা’ ইত্যাদি সম্পর্কেও সে কথা খাটে। বাংলাদেশে বেশ কিছু শব্দ বা ধারণা সাধারণের মধ্যে যে অর্থ তৈরি করে সেটা চিন্তাশীল লেখকের জন্য বিপদের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। পুরো দেশের জন্যও বটে। বিদ্যমান ধারণাগুলোকে নিরন্তর পর্যালোচনার অধীনে আনা দর্শনের কাজ। যেমন ‘গণতন্ত্র’। এটা বাংলা ভাষার অন্তর্গত কোনো ধারণা নয়, পরিভাষা। ইংরেজি ডেমোক্রেসি শব্দটির অনুবাদ। কিন্তু এর উৎপত্তি ইংরেজি ভাষায় নয়। মূলে এটি গ্রিক শব্দ। শব্দের ব্যুৎপত্তি নিয়ে যেসব লেখালেখি আমরা দেখি, এখানে বলা হয় যে গ্রিক ‘ডেমোস’ (demos) এবং ‘ক্রাটোস’ (kratos) এই দুটি শব্দ থেকে ‘ডেমোক্রেসি’। ‘ডেমস’ মানে সাধারণ মানুষ, আর ‘ক্রাটোস’ মানে শাসন। দুটো মিলে ডেমোক্রেসির অর্থ হল ‘সাধারণ মানুষের শাসন’। এটাই পাঠ্যপুস্তকে পড়ানো হয়। এটাই স্কুল-কলেজে আমরা শিখেছি। কিন্তু ব্যাপারটা এত সহজ বা সরল নয়। প্রথমে জানা দরকার সাধারণ মানুষ বলতে শুধু পুরুষদের বোঝানো হতো, মেয়েদের কিংবা দাসদের নয়। দ্বিতীয়ত, ‘ডেমোস’ মানে যে এলাকায় গ্রিক নগররাষ্ট্রের নাগরিকরা বাস করত। ‘পলিস’ (polis) অর্থাৎ ‘রাজনৈতিক পরিসরে অংশগ্রহণ করতে চাইলে ‘ডেমোস’-এ বসবাসরত নাগরিকদের রেজিস্ট্রেশন করতে হতো। কারণ ‘ডেমোস’ দিয়েই তার পরিচয়। ইংরেজিতে ডেমগ্রাফি শব্দটির মধ্যে ‘ডেমোস’-এর মানেটা কিছুটা ধরা আছে। দেখা যাচ্ছে ‘ডেমোস’-এর ধারণা ‘পলিস’ বা রাজনৈতিক পরিসরের ধারণার সঙ্গে যুক্ত। বিষয়টি শুধু শাসক নির্বাচন করার ব্যাপার ছিল না। রাজনৈতিক বিষয়াদিতে নাগরিকদের অংশগ্রহণের বিষয়টিই ছিল আসল এবং গণতন্ত্রের মূল কথা বা মর্ম। গণতন্ত্র একটি নির্বাচনী ব্যবস্থা মাত্র নয়। কারণ রাজনৈতিক পরিসরের উপস্থিতি এবং সেখানে অংশগ্রহণ ছাড়া ‘গণতন্ত্র’ কথাটির কোনো মানে দাস ব্যবস্থার ওপর দাঁড়ানো গ্রিসেও ছিল না। আধুনিককালে ‘গণতন্ত্র’ নামক ধারণাটি ফরাসি বিপ্লবে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের স্বাধীনতার ঘোষণার মধ্য দিয়ে বিস্তর রূপান্তরিত হয়েছে। সেটা ভিন্ন বিতর্ক। স্থানাভাবে সেটা এখানে আলোচনা করছি না, আপাতত প্রয়োজনও নাই। এটাই শুধু আমি আপাতত বলতে চাইছি যে, নারী ও দাসদের প্রসঙ্গ বাদ দিলে গ্রিক আমলেও গণতন্ত্রের ধারণা ও চর্চার সঙ্গে রাজনৈতিক পরিসরের উপস্থিতি অঙ্গাঙ্গি যুক্ত ছিল। অথচ আমরা যখন শব্দটির অনুবাদ ও ব্যবহার করছি তখন এর ছিটেফোঁটাও তার মধ্যে আর হাজির থাকেনি। তখন গণতন্ত্রকে স্রেফ একটি সরকার নির্বাচনের ধারণা হিসেবে গ্রহণ করেছি। এর রাজনৈতিক কুফল হয়েছে মারাÍক। যা আমরা এখন ভোগ করছি। বাংলাদেশে ‘রাজনৈতিক পরিসরের’, অর্থাৎ যেখানে জনগণ রাজনৈতিক বিষয়াদি সম্পর্কে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে নিজের বক্তব্য জানাতে পারে এবং অংশগ্রহণ করতে পারে, এই অবিশ্বাস্য অনুপস্থিতির পরও আমরা ‘গণতন্ত্র’ কথাটি যত সহজে ব্যবহার করে যাচ্ছি সেটাই আশ্চর্যের। কিন্তু আমরা হাতির ডিম খেতে অভ্যস্ত। গণতন্ত্রের নামে বগল বাজিয়ে যাচ্ছি। যে কোনো ধারণাকে পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে পরিচ্ছন্ন করে তোলা দর্শনের কাজ, সাহিত্য সহায়ক। এটুকুই বোঝাতে চেয়েছি। উৎসঃ যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: লালন শাহ ও সাম্প্রদায়িকতা Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com লালন শাহ ও সাম্প্রদায়িকতা 17 October 2015, Saturday ফকির লালন শাহ তিরোধান করেছিলেন পহেলা কার্তিকে। বাংলা বছর ১২৯৭ আর ইংরেজি ১৮৯০ সালের ১৭ অক্টোবর। আজ পহেলা কার্তিক ১৪২২, ফকির লালন শাহের ১২৫তম তিরোধান দিবস। ফকির লালন শাহ কবে কোথায় কার ঘরে কিভাবে জন্মগ্রহণ করেছিলেন সেই তথ্য কারোরই জানা নাই। কিন্তু তারপরও তার তিরোধানের পর থেকে কেউ তাকে হিন্দু আর কেউ তাকে মুসলমান বলে লাঠালাঠি কম করেনি। লালন নিজের পরিচয় সম্পূর্ণ গোপন করে যাওয়ার পরও কুটিল সাম্প্রদায়িকতা তাকে ক্রমাগত মলিন করে দিতে চেয়েছে বারবার। কখনও না জেনে, কখনও সজ্ঞানে। এর বিরুদ্ধে তার অনুসারী ও অনুরাগীরা বারবার রুখে দাঁড়িয়েছেন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘মনের মানুষ’ নামক আজগবি উপন্যাস ও সেই বানানো কাহিনী নিয়ে গৌতম ঘোষের ছবি পুরানা সাম্প্রদায়িকতাকেই সম্প্রতি আবার উস্?কে দিয়েছে। সুনীল নিজেই লিখেছেন, তার ‘মনের মানুষ’ উপন্যাসটিকে ‘লালন ফকিরের প্রকৃত ঐতিহাসিক তথ্যভিত্তিক জীবনকাহিনী হিসেবে একেবারেই গণ্য করা যাবে না। কারণ তার জীবনের ইতিহাস ও তথ্য খুব সামান্যই পাওয়া যায়।’ যদি তাই হয়, তাহলে ফকির লালন শাহকে কেন্দ্রীয় চরিত্র বানিয়ে এই উপন্যাস ফাঁদার কি দরকার ছিল? যিনি নিজের জীবদ্দশায় সজ্ঞানে ও সচেতনভাবে নিজের পরিচয় অপ্রকট করে গিয়েছেন, তার গায়ে আবার সাম্প্রদায়িক পরিচয় সেঁটে দেয়া কেন? কেন প্রতিষ্ঠিত করতে হবে যে, তিনি জন্মসূত্রে একজন হিন্দু। এমনকি তার জাতিও কেন নির্ণয় করে বলে দিতে হবে যে, তিনি কায়স্থ ঘরের সন্তান? নাম লালন চন্দ্র কর? সুনীল উপন্যাসটিকে তথ্যভিত্তিক জীবনকাহিনী হিসেবে একেবারেই গণ্য করা যাবে না বলে দাবি করলেও ঐতিহাসিক রণজিৎ গুহ ‘মনের মানুষ’ উপন্যাসের পেছনের পাতায় লিখেছেন, ‘তথ্যগত ভিত্তি সংকীর্ণ হলেও একটা ঐতিহাসিক কাহিনীর ঐতিহাসিকতা কী করে বজায় রাখা যায় সেই দুঃসাহসিক চেষ্টার সাফল্য এ উপন্যাসে সত্যিই বিস্ময়কর।’ যিনি এই কথাগুলো লিখেছেন তিনি স্বনামে খ্যাত একজন ভারতীয় ঐতিহাসিক। ঔপন্যাসিক তার উপন্যাসকে ‘প্রকৃত ঐতিহাসিক তথ্যভিত্তিক জীবনকাহিনী হিসেবে একেবারেই গণ্য করা যাবে না’ ঘোষণা দিয়ে আগেভাগেই পাঠকের কাছ থেকে দায়মুক্তি চাইছেন, আর কিনা ঐতিহাসিক বলছেন, এই উপন্যাস এক ‘দুঃসাহসিক চেষ্টা’! কীসের? ঐতিহাসিক কাহিনীর ঐতিহাসিকতা বজায় রাখার? দারুণ ব্যাপার! ‘মনের মানুষ’ উপন্যাস ও সিনেমার সাম্প্রদায়িক বয়ান এবং শ্রেণী ও জাতের রাজনীতি অন্যত্র আলোচনার বিষয়। লালনের জন্ম ও জাতের কেচ্ছা দিয়ে তাকে হিন্দু কিংবা মুসলমান বানানোর দিকগুলো নিয়ে আলোচনা করব। লালন সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছিলেন শুধু জাতপাতবিরোধী গান লিখে নয়, নিজের পরিচয় গোপন বা লুপ্ত করে দেয়ার সাধনা দিয়েও। বাংলার ভাবান্দোলনের দিক থেকে এর ভাবগত তাৎপর্য এবং সেই তাৎপর্যের রাজনীতি অনুধাবন বরং একালে অনেক বেশি জরুরি। সত্য হচ্ছে এই যে, লালন তার কোনো শিষ্যের কাছে তার কোনো জন্ম-পরিচয় দেননি। কেউই আসলে তার জন্ম-পরিচয় জানে না। তার জন্ম-পরিচয় সম্বন্ধে যেসব দাবি আমরা শুনি তার সবটাই ভুয়া, কাল্পনিক কিংবা অনুমান। সাতচল্লিশের আগে ঔপনিবেশিক সময় থেকে তাকে ‘হিন্দু’ বলে পরিচয় দেয়ার চল শুরু হয়। বাংলা ১২৯৭ সালের পহেলা কার্তিকে তার তিরোধানের ১৫ দিন পর মৃত্যু সংবাদ ছাপা হয় সেই সময় কুষ্টিয়া থেকে প্রকাশিত ‘হিতকরী’ পত্রিকার একটি সম্পাদকীয় নিবন্ধে, ১৫ কার্তিক ১ম ভাগ ১৩ সংখ্যায়। কে সেই নিবন্ধ লিখেছেন জানা যায়নি। পত্রিকার স্বত্বাধিকারী ছিলেন মীর মশাররফ হোসেন। সেখানে স্পষ্টভাবেই লেখা ছিল, ‘ইঁহার জীবনী লিখিবার কোন উপকরণ পাওয়া কঠিন। নিজে কিছুই বলিতেন না। শিষ্যেরা তাঁহার নিষেধক্রমে বা হয় অজ্ঞতাবশতঃ কিছুই বলিতে পারে না।’ তিনটি দিক পরিষ্কার। এক. ‘হিতকরী’ বলছে, তার জীবনী লেখার উপকরণ পাওয়া কঠিন; দুই. লালন ফকির নিজের সম্পর্কে নিজে কিছুই বলেননি এবং ৩. তার শিষ্যরা লালন সম্পর্কে কিছুই বলতে পারেন না। এই তিনটি প্রধান সত্যের পরে ‘হিতকরী’ বলছে, ‘তবে সাধারণে প্রকাশ লালন ফকির জাতিতে কায়স্থ ছিলেন। কুষ্টিয়ার অধীন চাপড়া ভৌমিক বংশীয়রা ইঁহার জাতি।’ হরফে গুরুত্বারোপ করছি আগের সত্যগুলো প্রতিষ্ঠার পর ‘হিতকরী’ পরের কথা যে প্রামাণ্য তথ্য হিসেবে হাজির করছে না, সেদিকে নজর রাখার জন্য। তাই তিনি যে জাতিতে কায়স্থ সেটা ‘সাধারণে প্রকাশ’ বলা হচ্ছে। কোনো প্রমাণিত সত্য হিসেবে নয়। সাধারণে প্রকাশিত কেচ্ছা যে প্রমাণের অতীত, সেটা নিশ্চিত করার জন্য বলা হয়েছে, ‘ইঁহার কোন আত্মীয় জীবিত নাই।’ অর্থাৎ সাধারণে প্রকাশ্য তার জন্ম পরিচয়ের যে কেচ্ছা জারি আছে তার সত্য-মিথ্যা যাচাইয়ের জন্য তার কোনো আত্মীয়কে জীবিত খুঁজে পাওয়ার উপায় ছিল না। তার জীবিতকালে তার জাতিগোষ্ঠীর অন্যান্য লোকজন তো কুষ্টিয়াতেই থাকার কথা। কিন্তু কেউ জানল না লালনের মা কে, বাপ কে? কোন পরিবারে তার জন্ম। মীর মশাররফ হোসেনের ‘হিতকরী’ লোকমুখের গল্পকেই সততার সঙ্গে লোকমুখের কেচ্ছা বলেই প্রকাশ করেছে। কিন্তু ‘সাধারণে প্রকাশ’ কথাটার মানে কি শুধু লোকমুখের কেচ্ছা? এর আগে কুষ্টিয়ার হরিণাথ মজুমদার বা কাঙাল হরিণাথ সম্পাদিত ‘গ্রামবার্তা প্রকাশিকা’তে ১৮৭২ সালের আগস্ট মাসে ‘জাতি’ নামে একটি লেখায় লালনকে জাতিতে কায়স্থ বলে উল্লেখ করা হয়েছে। এই লেখাটিও কে লিখেছেন জানা যায়নি। লেখা হয়েছে, ‘লালন শা নামে এক কায়স্থ আর এক ধর্ম্ম আবিষ্কার করিয়াছে। হিন্দু মুসলমান সকলেই এই সম্প্রদায়ভুক্ত।’ এতটুকুই। ফকির লালন শাহকে কায়স্থ হিন্দু হিসেবে প্রতিষ্ঠার এই প্রয়াসের পর বসন্তকুমার পাল ‘প্রবাসী’ পত্রিকায় ‘হিতকরী’র লেখা অনুসরণ করে প্রবন্ধ লিখে লালনের হিন্দুত্ব প্রতিষ্ঠিত করার উদ্যোগ নেন। আগে যে তথ্য ‘সাধারণে প্রকাশ’ বলে জারি ছিল, এখন তাকে সরেজমিন প্রমাণ করার একটা উৎকট প্রয়াস দেখা যায়। বসন্তকুমার পালও স্বীকার করেন যে, ‘পরিতাপের বিষয় তাহার পূর্ব্বপুরুষের বিষয় ঠিক ঠিক বলিতে সক্ষম এমন কেহ আর এখন জীবিত নাই।’ কিন্তু তবু তিনি লালনের মা-বাপ খুঁজে বের করেন! তার দাবি, ‘যে স্থানে আমার বাড়ি তাহার অপর পাড়া অর্থাৎ ভাণ্ডারিয়া গ্রামে যে স্থানে সম্প্রতি সেখ চৌকিদার বাড়ি করিয়া আছে, ঠিক সেই স্থানেই সাঁইজীর জননী শেষ জীবন অতিবাহিত করিয়া যান।’ যারা ঠিক ঠিক বলতে সক্ষম তারা কেউই আর জীবিত নাই, তবুও বসন্তকুমার পাল বলছেন, ‘তবে সাঁইজী এই গ্রামেরই লোক ইহা প্রাচীন অধিবাসীদিগের প্রায় সকলেরই জানা আছে।’ কিন্তু বসন্ত কুমার পালকে স্বীকার করতে হয়েছে যে, ‘‘এখানে (অর্থাৎ ভাঁড়রা বা ভাণ্ডারিয়া গ্রামে- ফ.ম.) সাঁইজীর বিশেষ কোন পরিচয় গ্রহণ করিতে না পারায় সেঁউড়িয়া আখড়ায় যাই।’ সেখানে তার শিষ্য পাঁচু শাহের কাছ থেকে কী তথ্য পেয়েছেন এবং তার সত্য-মিথ্যা কিভাবে তিনি যাচাই করলেন, তার কিছুই তিনি উল্লেখ করেন নাই। বরং স্বীকার করেছেন, পাঁচু শাহ (বাংলা ১৩২৯) তখন বৃদ্ধ, ৯৯ বছর বয়স। কোন তথ্যের কী উৎস কিংবা তথ্যের কোনো প্রকার প্রামাণ্যতা বা প্রদর্শন ছাড়াই দাবি করেছেন, ‘সাঁইজী কায়স্থ কুলে চাপড়ার বিখ্যাত কর মহাশয়দের বংশে জন্মগ্রহণ করেন।’ এই তথ্য তাকে কে দিল কিছুই জানা যায়নি। আগে যা ‘সাধারণে প্রকাশ’ হিসেবে জারি ছিল, এখন বসন্ত কুমার পাল নিজেই ফকির লালন শাহকে হিন্দু কায়স্থ হিসেবে এভাবেই প্রতিষ্ঠিত করার চেষ্টা চালান। তার কথাই প্রমাণ হয়ে ওঠে। বসন্ত কুমার পাল এটাও জানিয়েছেন ‘...শ্রীমান আবুল আহসান চৌধুরীকেও চিঠিপত্র ও সাক্ষাতে সবকিছু জানাইয়াছি।’ (বসন্তকুমার পাল, ‘ফকির লালন শাহ। আবুল আহসান চৌধুরীর সংগ্রহ-গবেষণা-ভূমিকা-সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘লালন সমগ্র’, পৃ-৭১১-৭১২, পাঠক সমাবেশ ২০০৮, ঢাকা) জসিমউদ্দীন ‘প্রবাসী’তে প্রকাশিত বসন্ত কুমার পালের নিবন্ধের প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন। ‘হিতকরী’তে প্রকাশিত প্রবন্ধের উদাহরণ উল্লেখ করে তিনি লিখেছেন, ‘‘সম্প্রতি গত শ্রাবণ মাসের ‘প্রবাসী’তে বাবু বসন্ত কুমার পাল মহোদয় তার সম্বন্ধে যে সুন্দর প্রবন্ধ লিখিয়াছেন তাহাতেও এই বৃত্তান্তের অনুসরণ করা হইয়াছে।” অর্থাৎ বসন্ত কুমার পাল ‘হিতকরী’র গল্পই অনুসরণ করেছেন। এরপর জসিমউদ্?দীন ঠাট্টা করে লিখেছেন, ‘এমনকি তিনি লালনের পিতা-মাতা ও আত্মীয়-স্বজনের পরিচয় দিতেও কুণ্ঠিত হন নাই। আমরা কিন্তু লালনের গ্রামের কাহারও কাছে এরূপ বৃত্তান্ত শুনি নাই।’ জসীমউদ্দীন বসন্ত কুমার পাল যেটাকে লালনের বাড়ি বলে দাবি করেছেন, তার পূর্ব পাশে এক বৃদ্ধ তাঁতির কাছে আরেক গল্প শুনেছেন। সেই কেচ্ছা অনুযায়ী লালন ছিলেন ব্রাহ্মণের ছেলে। ছেলেবেলায় তাকে নিয়ে মা তীর্থে যাওয়ার সময় লালন বসন্তে আক্রান্ত হলে তাকে ফেলে যান। এক মুসলমান মেয়ে তাকে পায়। যত্নে সুস্থ করে তোলে। এরপর যশোরের উলুবেড়িয়া গ্রামের সিরাজ সাঁই তাকে চেয়ে নেয় এবং শিক্ষা দেয়। এক সময় ব্রাহ্মণের ছেলে মুসলমান হয়ে যায়। ব্রাহ্মণের ছেলে মুসলমান হওয়ার যে বাসনা গোপনে কাজ করে, এই কেচ্ছার পেছনে সেটা কাজ করে থাকতে পারে। তবে জসীমউদ্দীন দুটো গল্পই ফকির লালন শাহের শিষ্য ভোলাই শাহকে জানান। ভোলাই সুস্পষ্ট জবাব দিয়েছিলেন, ‘অনেকে তার সম্বন্ধে অনেক কথাই বলে বটে কিন্তু কেউই প্রকৃত ঘটনা জানে না।’ ভোলাই শাহের বক্তব্য জসীমউদ্দীন উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে রেখেছেন। এটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ। (জসীমউদ্দীন, ‘লালন ফকির’, আবুল আহসান চৌধুরীর সংগ্রহ-গবেষণা-ভূমিকা-সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘লালন সমগ্র’, পৃ-৭৬৩-৭৬৪, পাঠক সমাবেশ ২০০৮, ঢাকা) কিন্তু ভোলাই শাহের এ কথার পরও জসীমউদ্দীনের মনে হয়েছে, লালনের ব্রাহ্মণের ছেলে হওয়ার গল্পটাই সঠিক। পরিণত বয়সে নয়, অল্প বয়সেই তিনি মুসলমান হয়েছিলেন। এক কেচ্ছার বদলে নতুন আরেক কেচ্ছা বানানোর মধ্যেই সাম্প্রদায়িকতার উল্টা পৃষ্ঠার বয়ান শুরু হয়ে যায়। জসিমউদ্দীনের যুক্তিও তথ্যের নির্ভরতা বা প্রামাণ্যতার ওপর দাঁড়ানোর প্রয়োজনবোধ করেনি। তার দাবি, ‘লালনের জীবনকথা জানা সহজ না হইলেও অসম্ভব নয়। কারণ এখনও বহু বৃদ্ধ জীবিত আছেন যাহারা লালনের সম্বন্ধে অনেক খবরই রাখেন।’ যে বৃদ্ধ তাঁতির কাছে জসীমউদ্দীন ব্রাহ্মণ লালনের গল্প শুনেছেন, সেই কারিগরই তাহলে তেমনই এক সবজান্তা বৃদ্ধ। লালন ব্রাহ্মণ ছিলেন, কম বয়সে মুসলমান হয়েছেন- এই গল্প কেন তার বিশ্বাসযোগ্য মনে হয়েছে তার যুক্তি অদ্ভুত। জসীম বলছেন, গল্পটি ‘বিশ্বাস করবার একটি কারণ আছে এই যে, লালনের সমস্ত গান পড়িয়া দেখিলে তাহাতে হিন্দু প্রভাব হইতে মুসলমান ধর্মের প্রভাব বেশি পাওয়া যায়। সম্প্রতি আমরা লালনের স্বহস্তলিখিত একখানা হাকিমী বই এবং মুসলমানি দোয়া-কালাম লেখা একখানা খাতা পাইয়াছি। তাহা পড়িয়া মনে হয়, লালন ফারসি কিংবা আরবি জানিতেন। তার কোনো কোনো গানে কোরআন শরিফের অনেক আয়াতের অংশবিশেষ পাওয়া যায়। ইহাতে মনে হয় তিনি কোরআন শরিফ পড়িতে পারিতেন। এখন লালন যদি পরিণত বয়সে মুসলমান হইয়া থাকেন, তবে যেসব অশিক্ষিত সমাজের মধ্যে তিনি থাকিতেন, তাহাতে অত বয়সে মুসলমান শাস্ত্র এতটা যে তিনি কিরূপে আয়ত্ত করিয়া লইলেন, সেটা ভাবিবার বিষয়।’ তবে তিনি লালনের যে গানগুলো নিবন্ধে উল্লেখ করেছেন, সেখানে হিন্দুয়ানি বা মুসলমানি প্রভাব আলাদা করা রীতিমতো ধড় থেকে মাথা আলাদা করার মতো দুঃসাধ্য ব্যাপার। সম্প্রতি (২০০৮) আবুল আহসান চৌধুরী ‘লালন সমগ্র’ নামে একটি বিশাল বই বের করেছেন। এর আগে বাংলা একাডেমি তার বই ‘লালন শাহ’ বের করেছে ১৯৯০ সালে। ‘লালন সমগ্র’ বইয়ের ভূমিকাংশে তিনি জানিয়েছেন, লালন জীবনীর ‘প্রামাণ্য উপকরণ ও প্রাচীন বিবরণও অতি দুর্লভ।’ তা সত্ত্বেও তিনি দাবি করেছেন, ‘‘হিতকরী (১৫ কার্তিক ১২৯৭/৩১ অক্টোবর ১৮৯০) পত্রিকার নিবন্ধ, সরলা দেবীর প্রবন্ধ (‘ভারতী’, ভাদ্র ১০২, মৌলবী আবদুল ওয়ালীর প্রবন্ধ ('Journal of the Anthropological Society of Bombay', Vol V, No 4; 1490), বসন্ত কুমার পালের প্রবন্ধ (‘প্রবাসী’, শ্রাবণ ১৩৩২ ও বৈশাখ ১৩৩৫) ও বই (‘মহাত্মা লালন ফকির’ ১৩৬২) এবং মুহম্মদ মনসুর উদ্দীনের ‘হারামণি’ (২য় খণ্ড, ১৯৪২, ৪র্থ খণ্ড, ১৯৫৯, ৭ম খণ্ড, ১৩৭১) গ্রন্থে লালন সম্পর্কিত কিছু নির্ভরযোগ্য উপকরণ পাওয়া যায়, যার সাহায্যে লালন জীবনীর একটি কাঠামো নির্মাণ সম্ভব।’’ ‘নির্ভরযোগ্য উপকরণ’ কথাটির ওপর আমাদের গুরুত্বারোপ করতে হচ্ছে। কিসের ভিত্তিতে আবুল আহসান চৌধুরীর কাছে এগুলো ‘নির্ভরযোগ্য’ মনে হল? কোনো যুক্তি তিনি দেননি। প্রশ্ন করা যেতে পারে, জসীমউদ্?দীনের লালনের জন্ম নিয়ে গল্প কেন নির্ভরযোগ্য মনে হল না? বিপরীতে বসন্ত কুমার পালের কেচ্ছা কেন নির্ভরযোগ্য মনে হল? নির্ভরযোগ্য উপকরণের এই তালিকা বিচার করলে দেখা যায়, লিস্টি একটা আমাদের হাতে ধরিয়ে দেয়া হচ্ছে ঠিকই; কিন্তু ঘুরেফিরে আবুল আহসান চৌধুরী হুবহু বসন্ত কুমার পালের গল্পকেই ‘নির্ভরযোগ্য উপকরণ’ গণ্য করেছেন। সেই গল্পের ভিত্তিতেই ফকির লালন শাহ সম্পর্কে পুরানা ভুয়া কেচ্ছাটাই ফের বলেছেন তিনি। অথচ হাজির করেছেন এমনভাবে, যাতে মনে হয় তিনি বুঝি অনেক গবেষণা করে একটা একাডেমিক সিদ্ধান্তে এসেছেন। লিখেছেন, ‘প্রচলিত মতে, লালন সাঁই ১৭৭৪ সালে সেই সময়ের নদীয়া জেলার অধীন কুষ্টিয়ার কুমারখালী থানার চাপড়া ইউনিয়নের অন্তর্গত গড়াই নদীর তীরবর্তী ভাঁড়ারা গ্রামে (চাপড়া গ্রামসংলগ্ন) জন্মগ্রহণ করেন। হিন্দু কায়স্থ পরিবারের সন্তান লালনের জনক-জননীর নাম যথাক্রমে মাধব কর ও পদ্মাবতী।’ এর পক্ষে সূত্র হিসেবে একমাত্র বসন্ত কুমার পালকেই তিনি ‘নির্ভরযোগ্য’ গণ্য করেছেন। (আবুল আহসান চৌধুরীর সংগ্রহ-গবেষণা-ভূমিকা-সম্পাদনায় প্রকাশিত ‘লালন সমগ্র’; পৃ-১১, পাঠক সমাবেশ ২০০৮, ঢাকা) লক্ষ করার বিষয়, আবুল আহসান চৌধুরী বসন্তকুমার পালের কেচ্ছা যে আসলে ‘নির্ভরযোগ্য’ নয়, সেটা জানেন। তার জন্ম সম্পর্কে আসলে যে কিছুই জানা যায় না, এই সহজ সত্যটার ওপর দাঁড়ালে চৌধুরীকে বসন্ত কুমার পালের কাহিনীটাকে ‘প্রচলিত মত’ বলে চালানোর অন্যায় চেষ্টা করতে হতো না। অথচ এটা তো ‘প্রচলিত মত’ নয়। কিন্তু তিনি সেটা করেছেন। এই মতটাকে বসন্ত কুমার পালের কেচ্ছা বললেই বুদ্ধিবৃত্তিক দিক থেকে সৎ কাজ হতো। লালনের জন্মসূত্র যদি জানা না যায়, তাহলে তাকে অজানা থাকতে দেয়াটাই ছিল সততার লক্ষণ। সহজ-সরল সত্যটাই প্রতিষ্ঠার দরকার ছিল যে, ফকির লালন শাহের জন্মের হদিস বা জন্মবৃত্তান্ত কিছুই জানা যায়নি। তার মতো একজন গবেষক যদি এই কথাটা জোরের সঙ্গে বলতেন, তাহলে সাম্প্রদায়িক বিষের হাত থেকে ফকির লালন শাহ রক্ষা পেতেন। আমরাও স্বস্তিবোধ করতাম। ফকির লালন শাহকে হিন্দু বা মুসলমান প্রমাণ করার ভেদবুদ্ধিটাই ভয়ঙ্কর ও বিপজ্জনক। দুর্ভাগ্য যে, এই ভেদবুদ্ধির চর্চা অনেকদিন ধরেই হয়ে আসছে। লালন নিয়ে যারা গুরুত্বপূর্ণ কাজ করেছেন বা করছেন, তারা আবুল আহসান চৌধুরীকে সাক্ষী মেনে বসন্ত কুমার পালের কেচ্ছাকেই ক্রমাগত প্রচার করে চলেছেন। সুধীর চক্রবর্তীর মতো সতর্ক গবেষকও এই প্রয়াস থেকে মুক্ত নন। সুনীল গঙ্গোপাধ্যায়ের ‘মনের মানুষ’ ও একই নামের গৌতম ঘোষের সিনেমাটিও বসন্ত কুমার পাল ও আবুল আহসান চৌধুরীর ভুয়া কেচ্ছার ওপর দাঁড়িয়ে আছে। ফকির লালন শাহকে হিন্দু প্রমাণ করার যে পুরানা বাসনা জারি ছিল, তাকেই এখন উপন্যাস ও সেলুলয়েডে আরও উলঙ্গভাবে আমরা দেখছি। লালনকে ‘হিন্দু’ প্রমাণ করার প্রত্যক্ষ কুফল হচ্ছে পাল্টা তাকে ‘মুসলমান’ বানানোর চেষ্টা। হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার বিপরীত প্রতিক্রিয়া হিসেবে এটা মুসলমান সাম্প্রদায়িকতার চেহারা। সাম্প্রদায়িকতার আরেক নমুনা। এ সম্পর্কে সুধীর চক্রবর্তী খুব উষ্মার সঙ্গে তার ‘ব্রাত্য লোকায়ত লালন’ বইয়ে আলোচনা করেছেন। এখানে জায়গা সংকুলান হবে না বলে সেই বিষয় বিস্তারের সুযোগ পাব না। সুধীর চক্রবর্তী লিখছেন, ‘‘কিন্তু ইতোমধ্যে ঘটে গেছে একটা বড়ো মত বদলের পালা, বিশেষত বাংলাদেশে। ১২৯৭ সালের ‘হিতকরী’র সম্পাদকীয় নিবন্ধ থেকে লালন ফকিরের যে জীবনী এবং তার হিন্দু উৎসের কথা সবাই জানতেন সে সম্পর্কে সংশয়-সন্দেহ ঘনাতে শুরু হয়েছে পঞ্চাশ দশকে। ১৩৩৫ সালে বসন্ত কুমার পাল লালন ফকিরের বিস্তৃত পরিচিতি লেখান ‘প্রবাসী’ পত্রে। পরে পূর্ণাঙ্গ বই ‘মহাত্মা লালন ফকির’ লেখেন ১৩৬২ সালে। মুহম্মদ মনসুর উদ্দীন, উপেন্দ্রনাথ ভট্টাচার্য, মতিলাল দাস প্রমুখ অগ্রণী লালন-গবেষকরা সবাই সেই জীবন বিবরণ জানতেন এবং মানতেন যে লালন ভাঁড়ারা গ্রামের অর্থাৎ কুষ্টিয়ার মানুষ, জন্মত হিন্দু কিন্তু নানা ঘটনা পরম্পরায় তিনি হয়ে যান জাতিহীন বাউল বা ফকির। কিন্তু একদল নতুন গবেষক বলতে চাইলেন লালন জন্মসূত্রেই মুসলমান।’’ (সুধীর চক্রবর্তী, ‘ব্রাত্য লোকায়ত লালন’, পৃ-৩০-৩১, পুস্তক বিপণি, কলিকাতা ১৯৯২)। সুধীর চক্রবর্তী যে দিকটা উপেক্ষা করছেন সেটা হচ্ছে, বসন্ত কুমার পালের বানানো কেচ্ছাটাই অন্যরা জানতেন ও মানতেন। এই ভুয়া কেচ্ছার পাল্টা আরেকটি ভুয়া কেচ্ছা বানানো হচ্ছে আদিতে লালনকে হিন্দু বানিয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিষ বপন করা হয়েছিল বলেই। আর দুই সাম্প্রদায়িক ধারার মাঝখানে চেপ্টা হয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে চলেছে লালনের ভক্ত, অনুরাগী, অনুসারী ও আগ্রহীরা। তিনি আরেক কাঠি এগিয়ে বললেন, একে বুঝতে হবে হিন্দু-মুসলমান দ্বিজাতি সমস্যার আলোকে। লালনের তিরোধান ঘটেছে ১৮৯০ সালে, সেই থেকে ১৯৫৩ সাল পর্যন্ত, দুই বাংলার কোনো গবেষক বা পণ্ডিত লালনকে মুসলমান-বংশোদ্ভূত বলেননি। লালন যে মুসলমান এই দাবি প্রথম তোলেন পাকিস্তান আমলে মুহম্মদ আবু তালিব তার ‘লালন পরিচিতি’ (১৯৬৮) বইয়ে। এতে বিস্ময় প্রকাশ করে সুধীর চক্রবর্তী লিখছেন, ‘কিন্তু ইতিহাসের কৌতুক এইখানে যে, লালন কী জাত ছিলেন তা সযত্নে গোপন করে রেখে গেছেন।’ (চক্রবর্তী ১৯৯২; পৃ-৩২)। দেখা যাচ্ছে, সুধীর চক্রবর্তী জানেন যে, ফকির লালন শাহ নিজে ‘কী জাত ছিলেন তা সযত্নে গোপন করে রেখে গেছেন।’ তাহলে তিনি কেন দাবি করছেন, বসন্ত কুমার পালের বানানো কেচ্ছাটাই অন্যরা জানতেন ও মানতেন। তিনিওবা কেন বসন্ত কুমার পালের কাহিনীর বিরুদ্ধে দাঁড়াননি? বসন্ত কুমার পাল লালনের জন্ম ও জীবনের গোপন জিনিস জেনেই যদি ফেলে গিয়ে থাকেন, তাহলে লালন কিভাবে নিজের জাত গোপন করে রাখতে পারলেন? দুর্ভাগ্য লালনের। ইতিহাসের কৌতুকটা আসলে কার সঙ্গে কার? সুধীর চক্রবর্তী নিজেও আবুল আহসান চৌধুরীর মারফতে বসন্ত কুমার পালের কেচ্ছাটাই জেনেছেন। ফকির লালন শাহ যে আসলেই নিজের ‘জাত’ গোপন করার জন্যই সজ্ঞানে, সচেতনভাবে জেনেশুনে নিজের জন্ম, পরিবার, জাত ইত্যাদির সব হদিস গোপন রেখে গিয়েছেন সেই সত্যও জানেন, অথচ দাঁড়িয়েছেন বসন্ত কুমার পাল ও আবুল আহসান চৌধুরীর কাতারে। তাদের কেচ্ছাকেই মেনে নিয়েছেন। অথচ লালন যে তার জন্মের কোনো হদিসই রেখে যাননি, এই সত্য জানা ও প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়েই ফকির লালন শাহকে কেন্দ্র করে সব ধরনের সাম্প্র্রদায়িকতার বিপরীতে ও বিরুদ্ধে দাঁড়াতে হবে। এটাই এখনকার প্রধান কাজ। তাকে হিন্দু বানানো চলবে না, মুসলমানও না। তখনই দিশা মিলবে ফকির লালন শাহের জীবন ও ভাবচর্চার সদর দরজার। বসন্ত কুমার পাল কিংবা মুহাম্মদ আবু তালিব- উভয় প্রকার সাম্প্রদায়িকতার হাত থেকে ফকির লালন শাহকে উদ্ধার না করলে সেই দরজা কোন দিকে সেটা কোনোদিনই জানা সম্ভব হবে না। আবুল আহসান চৌধুরী, সুধীর চক্রবর্তী ও আরও অনেকে ফকির লালন শাহকে মুহাম্মদ আবু তালিবের হাত থেকে বাঁচাতে চান, কিন্তু সেটা চান বসন্ত কুমার পালের হাতে তাকে তুলে দেয়ার জন্য। তারা চান, এতকাল তারা যা জেনে এসেছেন ও মেনে এসেছেন, আমরাও সেই ‘প্রচলিত মত’টাই জানি ও মানি। প্রহসনটা আসলে এখানেই। সাম্প্রদায়িকতাসহ সব ধরনের পরিচয়ের রাজনীতি বিলোপ করার সাধনার মধ্যে ফকির লালন শাহের জীবন ও ভাবচর্চার অর্থ আমরা ধরতে পারব। সেদিক থেকে এতটুকু জানাই যথেষ্ট যে, তিনি কালীগঙ্গা নদীতে ভেসে এসেছেন। তাকে কারিগর মলম শাহ অজ্ঞান ও অসুস্থ অবস্থায় উদ্ধার করেন। মলম ও তার স্ত্রী মতিজান তাকে সেবা শুশ্রূষায় নতুন জীবন দান করেন। এরপর তিনি মলম আর মতিজানকে ছেড়ে যাননি। তার কবরের পাশেই ফকির মতিজানকে কবর দেয়া হয়েছে। তারই ইচ্ছানুযায়ী। ব্যস। এতটুকুই। জীবের জীবন নয়, তার সাধক জীবন ও সাধনাই তার পরিচয়। ১ কার্তিক ১৪২২। ১৬ অক্টোবর ২০১৫। ছেঁউড়িয়া, কুষ্টিয়া। পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:পরিবেশ Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত, পাহাড়ি এলাকায় ভূমিধসের আশঙ্কা 12 October 2016, Wednesday উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এ কারণে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ (তিন) নম্বর স্থানীয় বিস্তারিত >> সংবাদ শিরোনাম >> পরিবেশ নিম্নচাপের প্রভাবে সাগর উত্তাল সমুদ্র বন্দরগুলোতে ৩ নম্বর সতর্কতা, ভারী বর্ষণে ভূমিধসের আশঙ্কা 12 October 2016, Wednesday উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি অব্যাহত রয়েছে। এর ফলে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে বিস্তারিত >> তিন ফুট বাড়ছে সাগরের পানি 11 October 2016, Tuesday পৃথিবী নামের আমাদের এই গ্রহটির উষ্ণতা বাড়ছে, এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। নতুন খবর হলো যতো দ্রুত উষ্ণতা বাড়ছে গত এক হাজার বছরেও ততোটা বাড়েনি। আর এতো দ্রুত বাড়ছে যে, গত বছর বিশ্ব নেতৃবৃন্দ উষ্ণতা বৃদ্ধির হ বিস্তারিত >> পদ্মায় ধরা পড়ল ৫৩ কেজির বাঘাআইড় 10 October 2016, Monday পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা ৫৩ কেজি ওজনের একটি বাঘাআইড় মাছ। বরিশাল নগরীর পোর্ট রোডে সোমবার বিকেলে মাছটি বিক্রি করা হয়েছে। পদ্মা নদীতে জেলেদের জালে ধরা পড়া মাছটি তুলতে ৫ জেলের কাজ করতে হয়েছে। যা বরিশাল নগরীর পোর বিস্তারিত >> ভিডিও >> যে মুরগি দেখতে কালো, ডিম-মাংসও কালো! 03 October 2016, Monday মুরগি মানে আপনার চোখে ভেসে আসে সাদা, খয়েরি, লালচে, কালো ছোপ ছোপ অথবা হলদেটে রংয়ের। কিন্তু ‘আয়াম সেমানি’ নামের এই মুরগিটি একেবারে কালো। এর গোটা শরীর কালো! মেঘ কালো, আঁধার কালো, কৃষ্ণ কালো. বিশ্বের মধ্যে শুধুমাত্র ইন বিস্তারিত >> বেশিরভাগ মানুষই জীবদ্দশায় বৈশ্বিক উষ্ণতার বিপদ প্রত্যক্ষ করবেন 30 September 2016, Friday ২০৫০ সালের আগেই বিশ্বের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এতে করে জলবায়ু পরিবর্তন বিপদজনক হয়ে উঠবে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে শীর্ষস্থানীয় একদল বিশেষজ্ঞ বলেছেন এ কথা। ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক বিস্তারিত >> বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 23 September 2016, Friday বুড়িগঙ্গা নামটি মনে হলেই কল্পনায় ভাসে পূতিগন্ধময় কালো দূষিত পানির এক নদীর কথা। এ নদীতেও ডলফিন বাস করে, তা বিশ্বাস করা কঠিন। গত মাসে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে একটি ছবি পোস্ট করা হয়, তাতে দেখা যায় বুড়িগঙ্গার বিস্তারিত >> বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম উল্কাপিণ্ড 15 September 2016, Thursday বাইরে থেকে দেখলে মনে হবে একটা বড় পাথরের চাঁই৷ কিন্তু কাছে গেলেই বোঝা যাবে, আদতে জিনিসটি তা নয়৷ তার চেয়ে অনেক বেশি কিছু৷ গোলাকার এই বস্তুটি আসলে একটি উল্কাপিণ্ড, যা প্রায় ৪ হাজার বছর আগে পৃথিবীর বুকে আছড়ে পড়ে বিস্তারিত >> চার সমুদ্রবন্দরে ৩ নম্বর সতর্ক সংকেত 11 October 2016, Tuesday উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় গভীর সঞ্চালনশীল মেঘমালা তৈরি হওয়ার কারণে উত্তর বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা এবং সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। চার সমুদ্র বন্দরসমূহকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সং বিস্তারিত >> মা ইলিশ রক্ষায় নেই কোনো প্রচারণা 11 October 2016, Tuesday প্রজনন বৃদ্ধি নিরাপদ করতে ইলিশের জন্য নতুন একটি অভয়াশ্রম করা হচ্ছে। মেঘনা নদীঘেরা বরিশাল, মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলার ৭৫ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ অভয়াশ্রমটি হবে দেশের ইলিশের ষষ্ঠ অভয়াশ্রম। অথচ এসব এলাকায় ইলিশ সম্পদ সং বিস্তারিত >> তিন দশকে সবচেয়ে উষ্ণ অক্টোবর দেখছে দেশ 05 October 2016, Wednesday বছরের এই সময়টায় আবহাওয়া থাকে বেশ আরামদায়ক। কমতির দিকে থাকে তামপাত্রা। তবে এই অক্টোবর এই দিক থেকে ব্যতিক্রম। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৩০ বছরে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে এত গরম পড়েনি কখনও। গত কয় বিস্তারিত >> ভূমিকম্প এবার দেখা যাবে! 03 October 2016, Monday ভূমিকম্পের বিষয়ে সচেতনতা বাড়াতে নতুন পদক্ষেপ নিচ্ছে বিশেষজ্ঞরা। ভূমিকম্পের ফলে যে ‘সিসমিক তরঙ্গ’ তৈরি হয় সেই তরঙ্গকেই শব্দ ও চিত্রে রূপান্তরিত করা হবে। তাই এবার থেকে ভূমিকম্প শোনাও যাবে, আর দেখাও। আর এই সিস বিস্তারিত >> চলতি বছরে বজ্রপাতে ১৭৭ জন নিহত 27 September 2016, Tuesday চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতে ১৭৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। মায়া বলেন, এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৮ হাজার ৩৫টি সোলার প্যা বিস্তারিত >> এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে নদীর পানি সবচেয়ে দূষিত 17 September 2016, Saturday .এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের ৪৮টি দেশের মধ্যে নদীর পানি সবচেয়ে বেশি দূষিত হচ্ছে বাংলাদেশে। আর নদী অববাহিকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অবনতি হয়েছে নেপাল, ভারত, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গা অববাহিকার পানি। বিস্তারিত >> বুধবারও বৃষ্টি হতে পারে 13 September 2016, Tuesday আজ মঙ্গলবার ঢাকায় ২৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত হয়েছে, এতে ঈদের জামাতে আসা মানুষকে ভোগান্তির মধ্যে পড়তে হয়। আগামীকাল বুধবারও দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি থেকে ভারি বর্ষণ হতে পারে। আজ মঙ্গলবার সন্ধ্যা বিস্তারিত >> পাঠা থেকে প্রতিদিন হাফ লিটার দুধ! 11 October 2016, Tuesday প্রকৃতির কি আজব খেয়াল। চাঁপাইনবাবগঞ্জের নাচোলে একটি পাঠা প্রতিদিন হাফ লিটার করে দুধ দিচ্ছে। এ ঘটনায় এলাকায় বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করেছে। ওই পাঠার মালিক নাচোল উপজেলার ফতেপুর ইউনিয়নের টাকাহারা গ্রামের বাবুল বিস্তারিত >> বিয়ারের ‘লোভে’ সাপের কাণ্ড 10 October 2016, Monday কেউ বিয়ার পানের পর খালি ক্যান ফেলে দিয়েছিলেন। ক্যানে হয়ত কিছুটা বিয়ার লেগে ছিল। বিয়ারের ঘ্রাণ পেয়ে বিষাক্ত সাপ তাতে মাথা ঢুকিয়ে দেয়। ছবি দেখে মনেই হতে পারে বিয়ারের লোভে সাপ এই কাণ্ড ঘটিয়ে বসেছে। ক্যাঙ্গারুর দেশ বিস্তারিত >> জ্যামাইকা-হাইতি-কিউবায় আঘাত হানছে ম্যাথিউ 03 October 2016, Monday হারিকেন ম্যাথিউ আরো শক্তি সঞ্চয় করে রোববার ঘন বসতিপূর্ণ জ্যামাইকা ও হাইতির দিকে অগ্রসর হচ্ছে। ঝড়ের প্রভাবে তীব্র বাতাসে ওই অঞ্চলের অনেক ঘরবাড়ি ও বিদ্যুতের লাইন ভেঙ্গে পড়তে পারে। এছাড়া ঝড়ের প্রভাবে প্র বিস্তারিত >> ভয়ঙ্কর রূপে ধেয়ে আসছে ম্যাথিউ 01 October 2016, Saturday হারিকেন ম্যাথিউ শুক্রবার দ্রুত শক্তি সঞ্চয় করেছে। এটি এখন ৪ ক্যাটাগরির ঝড়ে পরিণত হচ্ছে এবং জ্যামাইকা থেকে কিছুটা দক্ষিণে ক্যারিবিয়ান সাগর অতিক্রম করছে। জাতীয় হারিকেন কেন্দ্র একে ‘খুবই বিপজ্জনক’ উল্লে বিস্তারিত >> স্বাধীনতার পর ৪৪ বছরে ২২ হাজার কিমি নৌপথ বিলুপ্ত 25 September 2016, Sunday আজ রবিবার বিশ্ব নদী দিবস। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিল্প বর্জ্যরে দূষণ, নদীর অবৈধ দখল, অতিরিক্ত পলি জমে ভরাট হয়ে আজ দেশের অধিকাংশ নদ-নদী হুমকির মুখে পড়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদ-নদীর ভবিষ্যত নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর শঙ বিস্তারিত >> নতুন স্বাস্থ্যঝুঁকি ই–বর্জ্য 17 September 2016, Saturday .বাতিল হওয়া টিভি, ফ্রিজ, কম্পিউটার, মুঠোফোন, বিদ্যুৎসাশ্রয়ী বাতিসহ বিভিন্ন বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম স্বাস্থ্য ও পরিবেশের নতুন ঝুঁকি হয়ে দাঁড়িয়েছে। যা ইলেক্ট্রনিকস বর্জ্য বা ই-বর্জ্য নামে পরিচিত। একটি এনজিওর বিস্তারিত >> পূর্ণিমাতেই হতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্প 13 September 2016, Tuesday যে কোনো পূর্ণিমার সময় হতে পারে ভয়াবহ ভূমিকম্প। পূর্ণিমার সঙ্গে পৃথিবীর মাধ্যাকর্ষণ শক্তির সরাসরি যোগাযোগ রয়েছে, আর সেই কারণেই ওইদিন বড়ধরণের ভূমিকম্প হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন বিজ্ঞানীরা। টোকিওর একদল বিজ্ঞানী সম্প্রত বিস্তারিত >> « পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ » Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 June 2016, Saturday কেন হিন্দু প্রশ্ন? বদরুদ্দিন উমর সম্প্রতি বেশ কয়েকটি লেখায় বাংলাদেশে হিন্দু প্রশ্ন ও সাম্প্রদায়িকতার প্রসঙ্গ তুলেছেন। তাঁর সাম্প্রতিক দুটো লেখা গুরুত্বপূর্ণ। ‘এটা কি সাম্প্রদায়িকতা?', লিখেছেন ২৫ মে ২০১৪ সালে, যুগান্তরে; দ্বিতীয় লেখাটি হচ্ছে, ‘বাংলাদেশে প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা?’ । এটিও ছাপা হয়েছে যুগান্তরে; সম্প্রতি, ৫ জুন ২০১৬ তারিখে। দেখলাম তাঁর এই লেখাগুলো বাম বলে পরিচিত অনেকে পছন্দ করে নি। যাদের মধ্যে তাঁর পুরানা অনুসারী এমনকি এখনকার অনুরাগীরাও রয়েছে। [১] অথচ যে দুটো প্রশ্ন বদরুদ্দিন উমর তুলেছেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাকে আমরা সাম্প্রদায়িকতা বলব? কিভাবে সেটা নির্ধারিত হবে? দ্বিতীয় প্রশ্ন যদি আমরা সংখ্যালঘু নিয়ে কথা বলতে চাই তাহলে ‘প্রকৃত সংখ্যালঘু’ কারা? প্রকৃত সংখ্যালঘু নির্ণয়ের পদ্ধতিও বা কিভাবে ঠিক হবে? এই প্রকার প্রশ্নের অন্তর্নিহিত অনুমান হচ্ছে বাঙালি জাতিবাদী রাষ্ট্রে বাঙালি হিন্দু কিভাবে সংখ্যালঘু হয়? সেতো বাঙালি জাতীয়তাবাদী বয়ানের ভিত্তিতে জাতিবাদী ক্ষমতা তৈরির কর্তা, জাতিতান্ত্রিক ক্ষমতার শরিক এবং ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের রাজনৈতিক কন্সস্টিটিউন্সি। দেখা যাচ্ছে, বাংলাদেশে হিন্দুর প্রশ্নকে সংখ্যাগুরু/সংখ্যালঘুর বিতর্কে পর্যবসিত করবার অতি সরলীকরণ বাংলাদেশে ক্ষুদ্র জাতি সত্তার প্রশ্নকে গৌণ, এমনকি অদৃশ্য করে দিচ্ছে। সেকারনে বাংলাদেশে ‘হিন্দু’ প্রশ্নকে আলাদা ভাবে পর্যালোচনা করতে হবে; বিষয়টি সম্পূর্ণ আলাদা। বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর সম্প্রতিকালে নির্যাতন বেড়েছে, উমর তা অকপটে স্বীকার করেন। কিন্তু তাকে তিনি সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে ব্যাখ্যা করতে রাজি নন। কিভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে সে বিষয়ে বিভিন্ন সময় ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভূমিকা সম্পর্কে তার লেখালিখি থেকে বুঝে নিতে হবে। শুধু এই দুটি লেখা থেকে বোঝা যাবে না। আগ্রহীরা আপাতত ৪ আগস্ট ২০১৩ তারিখে যুগান্তরেই ছাপা ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ফ্যাসিবাদী হামলারই এক নগ্ন রূপ’ লেখাটি পড়ে দেখতে পারেন। তাছাড়া বদরুদ্দিন উমর ভালই জানেন যে এখন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জনগণকে খেয়ে না খেয়ে ‘সাম্প্রদায়িক’ প্রমাণ করার পেছনে খুবই সুনির্দিষ্ট ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত রাজনীতি কাজ করে। বাংলাদেশের ভু-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে।[২] ভারতে হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির প্রাবল্য এবং ভারতের রাষ্ট্রক্ষমতায় হিন্দুত্ববাদী শক্তির অধিষ্ঠানের কারনে বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন নতুন ভাবে সামনে চলে এসেছে। বিশেষত পাশাপাশি যখন বাংলাদেশের হিন্দুরা নিজেদের বাংলাদেশের নাগরিক নন, স্পষ্ট ভাবেই হিন্দু হয়ে থাকবার দাবি তুলছেন। ইতোমধ্যে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানদের প্রতিনিধি হিসাবে রানা দাশগুপ্ত ১৬ অগাস্ট ২০১৫ তারিখে প্রথম আলোকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে জনসংখ্যার ভিত্তিতে বাংলাদেশে হিন্দুদের জন্য আলাদা আসন দাবি করেছেন। বাংলাদেশ জাতীয় হিন্দু মহাজোট আরও স্পষ্ট ভাবে পৃথক নির্বাচন ব্যবস্থা, পৃথক মন্ত্রণালয় ও সংসদে ৬০টি সংরক্ষিত আসনের দাবি জানিয়েছে। (দেখুন, ১৮ জুন বাংলা ট্রিবিউন) । অস্বীকার করবার উপায় নাই বাংলাদেশের রাজনীতিতে হিন্দু প্রশ্ন নতুন রাজনৈতিক তাৎপর্য নিয়ে হাজির হয়েছে। বদরুদ্দিন উমরের লেখা এবং সেই লেখা নিয়ে বিতর্ক সে কারণে খুবই সময়োচিত হয়েছে। মার্কস-লেনিনের ধ্রুপদি চিন্তার জায়গায় দাঁড়িয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিচারকে শ্রেণি রাজনীতির অধীনে বিবেচনার তাগিদ থেকে বাংলাদেশের হিন্দু প্রশ্ন মীমাংসার ক্ষেত্রে উমর আমাদের চিন্তার অভিমুখ পদ্ধতিগত ভাবে বদলাবার প্রস্তাব করছেন। যেন জাতিবাদী ও ফ্যাসিস্ট বয়ান থেকে বেরিয়ে আমরা আর্থ-সামাজিক অবস্থা ও সমাজে দ্বন্দ্বসংঘাতের চরিত্রকে সঠিক ভাবে বুঝতে পারি। কেবল তখনই সমস্যার সমাধানের জন্য সঠিক নীতি ও কৌশল অবলম্বন সম্ভব । উমরের তত্ত্বগত অনুমান কিম্বা সাম্প্রদায়িকতার সামাজিক ভিত্তি বাংলাদেশে আছে কি নাই তা নিয়ে তর্ক হতেই পারে। কিন্তু আমাদের চিন্তার অভিমুখ বদল ও হিন্দুর নির্যাতন মাত্রই সাম্প্রদায়িকতা প্রমাণ করবার অভ্যাস থেকে বেরিয়ে আসার প্রস্তাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি তাঁর লেখা নিয়ে তর্ক আন্তরিক ও ইতিবাচক দিকেই আমাদের নেবে। মার্কস-লেনিনের ধ্রুপদি চিন্তার জায়গায় দাঁড়িয়ে সাম্প্রদায়িকতার বিচারকে শ্রেণি রাজনীতির অধীনে বিবেচনার তাগিদ থেকে বাংলাদেশের হিন্দু প্রশ্ন মীমাংসার ক্ষেত্রে উমর আমাদের চিন্তার অভিমুখ পদ্ধতিগত ভাবে বদলাবার প্রস্তাব করছেন। যেন জাতিবাদী ও ফ্যসিস্ট বয়ান থেকে বেরিয়ে আমরা আসলেই সমস্যার সমাধানের জন্য সঠিক নীতি ও কৌশল অবলম্বন করতে পারি। তাঁর তত্ত্বগত অনুমান কিম্বা সাম্প্রদায়িকতার সামাজিক ভিত্তি বাংলাদেশে আছে কি নাই তা নিয়ে তর্ক হতেই পারে। কিন্তু আমাদের চিন্তার অভিমুখ বদলাবার এই প্রস্তাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি তাঁর লেখা নিয়ে তর্ক আন্তরিক ও ইতিবাচক দিকেই আমাদের নেবে। তার লেখা পড়ে বামদের মতো আমাদের ভিমরি খাবার এবং তাকে অন্যায় ভাবে সমালোচনা করার কোন দরকার নাই। হিন্দু প্রশ্নের বিচারে এক শ্রেণির বামের হীনমন্যতা বাংলাদেশের যে সকল বামেরা তাকে অন্যায় ভাবে সমালোচনা করছে তাদের মূল সমস্যা হচ্ছে চরম হীনমন্যতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক অসততা। এদের ধারণা বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক প্রমাণ করতে না পারলে বুঝি বাংলাদেশের নাগরিক হিসাবে হিন্দু বা হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের আর কোন ব্যাখ্যা দেওয়া যাবে না। বাংলাদেশের সমাজকে দোষী সাব্যস্ত করে আন্তর্জাতিক কাঠগড়ায় না তুলে তারা স্বস্তি পায় না। হিন্দু যে কারণেই নির্যাতীত হোক তাকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের হাতে সংখ্যালঘু হিন্দুর অত্যাচার নির্যাতন হিসাবে ব্যাখ্যা করতেই হবে। সেভাবেই দেখতে হবে। একে উমর তাঁর কোন এক লেখায় বলেছেন এটা শ্রেণি বিশ্লেষোণের পদ্ধতি বাদ দিয়ে বামদের সাম্প্রদায়িক চিন্তার পাটাতনে বন্দী থেকে সাম্প্রদায়িকতাকে বোঝার চেষ্টা। নিরন্তর ফ্যাসিস্ট আওয়ামী লীগের লেজুড়বৃত্তির অভ্যস থেকে এই কঠিন রোগের তৈরি হয়। এই এক বিচিত্র ও বিকৃত মানসিকতা! বাংলাদেশে হিন্দুর ওপর নির্যাতনকে সাম্প্রদায়িকতা হিসাবে স্বীকার না করলে বুঝি হিন্দুর ওপর নির্যাতন অস্বীকার করা হয় ! মোটেও তা নয়। বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ। বামদের হীনমন্যতার কারনে তারা মনে করে বাংলাদেশে ‘সাম্প্রদায়িকতার সামাজিক ভিত্তি নাই’ বলা মানেএই দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের অকুল সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া, তাদের ওপর অত্যাচার নির্যাতনের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ বাদ দেওয়া। এখানেই বামদের বুদ্ধিবৃত্তির চরম অসততা ও দীর্ঘদিনের চিন্তাহীনতার আবর্জনা। এই ময়লা সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে বামেরা বয়ে বেড়ায়। অথচ বদরুদ্দিন উমরের দুটো লেখার প্রধান উদ্দেশ্যই হচ্ছে অত্যাচার নির্যাতন, মন্দির ভাঙা, জমি-সম্পত্তি দখল করে নেওয়া ইত্যাকার দুর্বৃত্তপনা ও লুন্ঠনবাজী রোখা। আমরা রুখব কি করে? সেটা রুখতে হলে বিদ্যমান ফ্যসিস্ট রাষ্ট্রব্যস্থার বিরুদ্ধে লড়তে হবে, বাংলাদেশের জনগণের বিরুদ্ধে নয়। যারা নিজেরাই ফ্যসিবাদের দ্বারা নিপীড়িত ও অত্যাচারিত। বলে রাখা দরকার বদরুদ্দিন উমর এবং তাঁর নেতৃত্বাধীন মুক্তি কাউন্সিলই বামদের মধ্যে সম্ভবত একমাত্র দল যারা ফ্যসিবাদ ও ফ্যসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে জনগণের সংগ্রামকে প্রধান গণ্য করে সনিষ্ঠ এবং নিজেদেরর চিন্তার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ রাজনীতি করে থাকেন। সাম্প্রদায়িকতার সামাজিক ভিত্তি নাই, কথাটা উমরের সামগ্রিক রাজনীতির আলোকেই বলা। এর উহ্য দিকটি হোল সাম্প্রদায়িকতার রাজনৈতিক ভিত্তি না থাকলেও ফ্যাসিবাদের সামাজিক ভিত্তি প্রবল। আর, ফ্যসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থার বিরুদ্ধে সংগ্রামকে আড়াল করবার জন্যই সাম্প্রদায়িকতাকে বাংলাদেশের প্রধান সমস্যা হাজির করা ফ্যাসিবাদীদের জন্য জরুরী হয়ে পড়ে। এর মধ্য দিয়ে ফ্যসিবাদীরা একমাত্র নিজেদেরকেই হিন্দুর রক্ষাকর্তা হিসাবে নিজেদের হাজির করতে পারে। উমর বলছেন উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের কারণে “হিন্দুরা বাংলাদেশীদেরই অংশ। হিন্দুরা ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু হলেও জাতিগতভাবে সংখ্যাগুরু। কাজেই যে বাঙালিরা বাংলাদেশে শাসন ক্ষমতায় রয়েছে তাদের মধ্যে বাঙালি হিন্দুরাও আছে। এটা মনে রাখা দরকার, বাংলাদেশে মুসলমানদের শাসন বলে যদি কিছু থাকে তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল বাঙালিদের শাসন’। শাসন ক্ষমতার চরিত্র বিচার করলে বাংলাদেশে মুসলমানরা শাসক নয়, বাঙালিরাই শাসক আর হিন্দুরা শাসক শ্রেণির অংশ। “এদিক দিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বাঙালিরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতি এবং সাঁওতাল,গারো, হাজং,রাখাইন ইত্যাদি জাতিগত সংখ্যালঘু ও উর্দুভাষী অবাঙালি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনকারী। বাংলাদেশের সর্বত্র যে শোষণ-নির্যাতন চলে সে শোষণ-নির্যাতন ধর্ম নির্বিশেষে হিন্দু-মুসলমান বাঙালিরা একত্রেই করে থাকে”। তাহলে জাতিবাদী বাঙালি শাসকদের অংশ হিন্দুরা স্রেফ ধর্মের পার্থক্যের কারণে বাংলাদেশে ‘প্রকৃত সংখ্যালঘু’ হতে পারে না। বাঙালি জাতির অংশ হিসাবে তার সম্প্রদায়গত অবস্থান বরং নিপীড়কের, নির্যাতীতের নয়। যে হিন্দু নির্যাতীত হচ্ছে সে হিন্দু বলে নির্যাতীত হচ্ছে না, সে গরিব ও মেহনতি জনগণের অংশ বলেই শোষিত ও নির্যাতীত। কিন্তু উচ্চবিত্ত এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণির হিন্দু বাঙালি সুবিধাভোগী। ফ্যাসিবাদী ক্ষমতার সুবিধা ও স্বাদ সে শগোল আনা উপভোগ করছে। এদেশের আদিবাসী বা ক্ষুদ্র জাতিসত্তাই ‘প্রকৃত সংখ্যালঘু’। বদরুদ্দিন উমর যেভাবে সিদ্ধান্ত টেনেছেন তার পর্যালোচনা হতে পারে, কিন্তু সেই ক্ষেত্রে তাঁর তোলা প্রশ্নের গভীরতার সঙ্গে পর্যালোচনার দূরদৃষ্টির সম্মিলন ঘটা জরুরী। উমর বলছেন, এই পরিস্থিতিতে “সাম্প্রদায়িকতার কারণ ও রাজনৈতিক চরিত্র বিষয়ে যারা অজ্ঞ, তারাই কোনো সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর যে কোনো ধরনের আক্রমণকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে থাকে। মতলববাজরা যে এ কাজ করে থাকে এটা সবারই জানা”। তাঁর লেখা মতলববাজদের বিরুদ্ধে। মতলববাজরা হচ্ছে ‘আওয়ামী ঘরানার কিছু বুদ্ধিজীবী’, সংবাদপত্র ও কিছু কিছু ব্যাক্তির বক্তৃতা-বিবৃতি ও প্রচারণা। তিনি স্বীকার করেন যে “হিন্দুসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ আগের থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে”। কিন্তু তার কারন সাম্প্রদায়িকতা নয়। তাঁর বক্তব্য হচ্ছে সাম্প্রদায়িকতা কোন হাওয়াই জিনিস নয়, তার ‘সুনির্দিষ্ট সামাজিক ভিত্তি’ থাকে। সেটা ব্রিটিশ ভারতে ছিল, পাকিস্তানের প্রথম দিকে থাকলেও তা ধীরে ধীরে অপসারিত হয়। “অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি বিকশিত হয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির মাধ্যমে তার সামাজিক ভিত্তি বিনষ্ট হয়”। অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চর্চার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আবির্ভাবই উমরের কাছে প্রমাণ যে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার আর্থ-সামাজিক ভিত্তি নাই। সাম্প্রদায়িকতার কোন আর্থিক ভিত্তি না থাকলে উমর তাকে সাম্প্রদায়িক বলতে নারাজ। যারা উমরের সমালোচনা করেছেন তাদের কাছে এই জায়গাটি হচ্ছে সবচেয়ে আপত্তির জায়গা। উমরের বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে তারা বলতে চান রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতা আছে। অতএব উমর ঠিক বলেন নি। কিন্তু পুরা সমাজ নিয়ে উমর কথা বলছেন। হিন্দুর ওপর অত্যাচার নির্যাতন কিম্বা হিন্দুর জমি দখল ইত্যাদি বাংলাদেশের সমাজ আদৌ সঠিক গণ্য বা বরদাশত করে কি? তাহলে একে অন্যের জমি লুন্ঠনকারী বা ভূমিদস্যুদের কাজ না বলে এবং তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট প্রতিরোধ তৈরি না করে তাকে সাম্প্রদায়িক নির্যাতন বলছি কেন? দুবৃত্ত ও ভূমিদস্যুদের বিরোধিতা না করে কেন তার ওপর সাম্প্রদায়িকতার রঙ চড়ানো? হাওয়ায় তলোয়ার ঘুরানো কেন সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন। তদুপরি মূল ইস্যু ও বাস্তব সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেবার জন্য জামাতে ইসলামি, বিএনপি এবং বাঙালি জাতিবাদীদের রাজনীতির যারা বিরোধী তাদের দোষারোপ করাই বা কেন? এদের সঙ্গে প্রগতিশীলতার লড়াইয়ের চরিত্র ভিন্ন। উমর বলছেন, জামাতে ইসলামী কে হিন্দুর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে দেখা যায় নি, শুরু থেকেই তাদের আক্রমণের লক্ষ্য গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও সমাজতান্ত্রিক শক্তি। জামাতের আক্রমণের যারা মূল লক্ষ্যবস্তু তাদের বিপুল ও অধিকাংশ মানুষই মুসলমান পরিবারের সদস্য। হিন্দু না। বরং যারা ইসলামী শাসন এবং ইসলামী আইন প্রবর্তন ও কার্যকর করার বিরোধী। তাহলে হিন্দু নির্যাতনের অপরাধ জামাতে ইসলামির ওপর চাপিয়ে দেওয়া মূলত গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও সমাজতান্ত্রিক শক্তির বাস্তব লড়াইয়ের চরিত্র অস্বীকার করা। লক্ষ্য করেছি যারা উমরের সমালোচনা করেছেন তারা এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটি এড়িয়ে গিয়েছেন। এখানেও বামদের বুদ্ধিবৃত্তিক অসততা ধরা পড়ে। প্রশ্ন হচ্ছে হিন্দুসহ অন্যান্য ধর্মালম্বিদের বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান তাদের সমাজের অন্তর্গত মনে করে কি? নাকি তাদের দুষমন গণ্য করে? এবং স্রেফ সাম্প্রদায়িক কারণে হিন্দুদের ক্ষতি করতে চায়? দুষমনির মাত্রা কতোটুকু হলে পুরা সমাজকে আমরা সাম্প্রদায়িক বলে চিহ্নিত করতে পারি? বিশ্বজিতকে যখন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের খুনিরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করল তাকে কিভাবে বিচার করব? বিশ্বজিৎ বারবার বলেছিল আমি হিন্দু, তারপরও তাকে হত্যা করা হয়েছে। তাহলে কি আওয়ামি লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠন একটি সাম্প্রদায়িক দল? হিন্দুরা সম্প্রদায় হিসাবে বিশেষ ভাবে নির্যাতীত হচ্ছে সেটাও ভুল। উমর বলছেন “দেশে সাধারণভাবে যে নৈরাজ্য এবং আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, তাতে সম্প্রদায় নির্বিশেষে মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা বিপন্ন হচ্ছে, অনেকে আওয়ামী লীগ ও তাদের সরকারি লোকদের দ্বারা অপহৃত ও নিহত হচ্ছেন। এদের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যাটি সব থেকে বেশি, কারণ দেশে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে তারাই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু হিন্দুরা বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি অংশ, শতকরা নয়-দশ ভাগের মতো। কাজেই সাধারণভাবে দেশে সরকারি ও বেসরকারি ক্রিমিনালদের দ্বারা মানুষের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে, তার দ্বারা জনগণের অংশ হিসেবে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এটাও বলা দরকার যে, হিন্দুদের জনসংখ্যার তুলনায় এ সংখ্যা অল্প। কিন্তু এক্ষেত্রে যা লক্ষ করার বিষয় তা হচ্ছে, মুসলমানরা অনেক অধিক সংখ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত, এমনকি নিহত হলেও কেউ বলে না যে, মুসলমানরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বা সাম্প্রদায়িকভাবে মুসলমানদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। কিন্তু কোনো হিন্দু এভাবে নির্যাতনের শিকার হলেই কিছু লোক সমস্বরে বলতে থাকে, ‘হিন্দুদের’ ওপর নির্যাতন হচ্ছে!” সাধারণ ভাবে বাংলাদেশের জনগণ যেভাবে নিপিড়ীত হচ্ছে গুম হচ্ছে খুন হচ্ছে তাকে ধামাচাপা দিয়ে হিন্দুর ওপর নির্যাতনের প্রচারকে উমর অশনি সংকেত হিসাবে দেখেছেন। উমরের লেখা থেকে যা বুঝেছি তা হোল তিনি কোন পরিভাষা বা সংজ্ঞা ব্যবহারের আগে তাকে কোন অর্থে কী বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহার করছেন সেই বিষয়ে পরিচ্ছন্ন থাকতে চান। এর মূল কারণ হচ্ছে বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক দেশ হিসাবে প্রমাণ করবার আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিপদ সম্পর্কে তিনি সজ্ঞান ও সতর্ক। বাস্তবে সাধারণ মানুষের ওপর যে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড চলছে হিন্দুদের নির্যাতন বাংলাদেশের সেই সামগ্রিক পরিস্থির অবনতির সঙ্গে যুক্ত, আলাদা কিছু নয়। তুলনায় যারা তার সমালোচনা করেছেন তাদের কাছে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাস্তবতা গৌণ। তাদের সমালোচনা উমরের কথাই প্রমাণ করে। তারা বাস্তবে কী ঘটছে তা বিচার না করে কোনো সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর যে কোনো ধরনের আক্রমণকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে থাকে। তারা ‘মতলববাজ’। দিল্লী ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নই তাদের লক্ষ্য। উমরের প্রশ্নের পরিপ্রক্ষিত ও আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক বাস্তবতা এড়িয়ে ‘সাম্প্রদায়িকতাকে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক একটা তাৎপর্য দিয়েই ব্যাখ্যা করা যায় না বলে’ যারা উমরের সমালোচনা করছেন , তারা মতলববাজদের দলেই ভিড়লেন। তারা দাবি করছেন ‘সাম্প্রদায়িকতা এখানে শক্তিশালীভাবেই দৃশ্যমান’। কিন্তু সেটা বাস্তবে নাকি প্রচার প্রপাগাণ্ডার ফলে তাদের লেখা থেকে সেটা বোঝার কোন উপায় নাই। এই ক্ষেত্রে হিন্দুর সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের দুর্বলতার কথা বলছেন। তাঁদের এই দাবির ভিত্তি দুর্বল। কারন বাংলাদেশে ক্ষমতার চরিত্রে বাঙালি জাতি ও জাতীয়তাবাদের আধিপত্য এবং আঞ্চলিক পরাশক্তি হিসাবে হিন্দুত্ববাদী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের হিন্দুর শক্তির সম্পর্ক বিচার করলে সম্প্রদায় হিসাবে এমনকি ব্যাক্তি হিসাবেও বাংলাদেশে হিন্দু শক্তিশালী ও শাসক শ্রেণির অন্তর্ভূক্ত। কিছু কিছু তত্ত্ববাগীশ এই ক্ষেত্রে আবার উমরের তত্ত্বকে ইকননমিক রিডাকশানিজমের দোষে দোষী বলেছেন। তারা সম্ভবত প্রাচীন উপরকাঠামো/ভেতরকাঠামোর তর্ক সামনে আনতে চান। ভাল। আমরা এই সুযোগে কার্ল মার্কসকে আবার অন্যত্র পড়ে নেবো। কিন্তু উমর যখন শ্রেণি ও ফ্যসিবাদের কথা বলেন তখন তিনি অর্থনীতির দ্বারা সব নির্ধারিত হয় এই দাবি কোথাও করেছেন বলে দেখি নি। তিনি সাম্প্রদায়িকতার ‘সামাজিক ভিত্তি’র কথা বলেছেন। ‘সামাজিক ভিত্তি’ কথাটার মানে তিনি উল্লেখিত দুটো লেখায় স্পষ্ট করেন নি। সেটা তাঁর অন্যান্য লেখা থেকে আমাদের বুঝে নিতে হচ্ছে। তাঁর কাছে আরো সুনির্দিষ্ট ব্যাখ্যা আমরা চাইতে পারি। কিন্তু তিনি অর্থনীতিবাদী রিডাকশানিজম করেছেন এই অভিযোগ ঠিক না। ইকোনমিক রিডাকশনিজম ওল্ড স্কুল মার্কসবাদের পুরনো অসুখ – এটা মানতে আমাদের অসুবিধা নাই। কিন্তু যে নিউ লেফটের বরাতে উপরি কাঠামোতে সাম্প্রদায়িকতা হাজির থাকার দাবি করা হচ্ছে তথাকথিত নিউ লেফটের সেই একই চিন্তা পদ্ধতি দিয়ে প্রশ্ন তোলা যেতে পারে ‘হিন্দুর উপর হামলা মানেই সাম্প্রদায়িকতা’ এই ডিস্কোর্স ভারত দ্বারা পরিবেষ্টিত দুর্বল বাংলাদেশে কোন শ্রেণী বা কোন শক্তির স্বার্থে তৈরি হয় ও প্রবল হয়ে ওঠে? এই বয়ানের উপকারভোগী কে? ফ্রাংকফুর্ট স্কুলের তত্ত্ববাগীশরা এই আদত প্রশ্নটা করছেন না। ফ্রাঙ্কফুর্ট স্কুল কেন্দ্রিক নিউ লেফট নিয়ে আমরা সুযোগ ও সময়মতো অন্যত্র আলোচনা করব। কিন্তু এই তর্কে উমরেরই জিত। কারন কোন শ্রেণি কেন এবং কিভাবে তার শ্রেণির পক্ষে বয়ান তৈরি করে উমরের লেখা সেই দিকেই আমাদের নজর ফেরাতে সহায়তা করে। অপ্রাসঙ্গিক তত্ত্ববাগীশতা এই ক্ষেত্রে ফ্যসিবাদের পক্ষের বয়ানের ন্যায্যতা প্রমাণে কাজে লাগতে এর অধিক কিছু নয়। আত্মপরিচয়ের ইতিহাস আছে: কিছুই চিরায়ত বা শ্বাশ্বত নয় তবে বদরুদ্দিন উমর পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের কালপর্বে বিভিন্ন ধর্মগোষ্ঠির মধ্যে অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তৈরি হওয়া বিভেদ, বিভাজন ও সামাজিক বিখণ্ডিভবন নিয়ে কিছু লিখেছেন বলে আমার চোখে পড়ে নি। তাঁর উত্থাপিত প্রশ্নের সঠিক বিবেচনার জন্য সেই দিক বিবেচনাতে নেওয়াও জরুরী। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি নিছকই ধর্ম বিশ্বাসজাত পরিচয় নয়। ধর্মীয় পরিচয়ের মধ্যে তাদের ঐতিহাসিক তাৎপর্য সীমাবদ্ধ নয়। যদিও ধর্ম বিশ্বাসীরা ইতিহাস থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন গণ্য করে অনৈতিহাসিক ভাবেই নিজেদের নিয়ে ভাবতে অভ্যস্ত। ইংরেজিতে একটা পরিভাষা আছে নিজের আত্মপরিচয়কে ‘এসেনশিয়ালাইজ’ করা। অর্থাৎ ঐতিহাসিক ভাবে আত্মপরিচয়ের উদ্ভব ও বিবর্তন বিচার না করে ধর্মীয় পরিচয়ের দ্বারা নির্ণিত পরিচয়কেই চিরায়ত, পূর্ব নির্ধারিত ও স্বতঃসিদ্ধ সত্তা গণ্য করা। উপমহাদেশে বিভিন্ন ধর্ম ও ধর্ম সম্প্রদায় থেকে সঞ্জাত পরিচয় সম্পর্কে আমরা এভাবেই ভাবতে অভ্যস্ত। আরেক রূপ হচ্ছে ভাষা বা সাংস্কৃতিক পরিচয়কে শ্বাশ্বত ও চিরায়ত ভাবা। ‘আবহমান বাঙালি’র ধারণা – যেন অনাদিকাল থেকে ‘বাঙালি’ ইহ্লোকে হাজির – অনৈতিহাসিক বা ইতিহাস বিরুদ্ধ চিন্তা থেকেই তৈরি হয়। অন্যদিকে সংখ্যাগুরু/সংখ্যালঘু বিভাজনও বিভ্রান্তি তৈরি করে। সামাজিক মানুষ ও তাদের সমাজকে নিছকই সংখ্যা দিয়ে বিবেচনার রীতি আধুনিক রাষ্ট্র এবং ভোটের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ফলে প্রসঙ্গের বাইরে বিমূর্ত ভাবে ‘সংখ্যালঘু’ কথাটিরও অপব্যবহার ঘটে। আধুনিক রাষ্ট্রে ক্ষমতা তৈয়ার ও বৈধ করবার প্রক্রিয়ার বিচার ছাড়া ‘সংখ্যালঘু’ বর্গটির যথেচ্ছ ব্যবহার প্রপাগাণ্ডা ও প্রচারের কাজেই বেশী ব্যবহার করা হয়। ইতিহাসের খবর নেওয়া বেশ পরিশ্রমের কাজ বটে। সেই খবর নিতে হলে প্রাচীন আর্য বনাম অনার্যের দ্বন্দ্ব, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও অনার্যদের পরাজয়, বর্ণাশ্রম প্রথা ভিত্তিক আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা কায়েম এবং তার বিরুদ্ধে হাজার বছরের নিম্ন জাতের মানুষের লড়াই, ঔপনিবেশিক শাসন পদ্ধতির মধ্যে হিন্দুমুসলমান ভেদ নীতি, উপমহাদেশে মুসলমানদের আগমন, সাম্রাজ্য ও সুলতানী প্রতিষ্ঠা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে জমিতে বিশেষ চরিত্রের ব্যাক্তিগত সম্পত্তি কায়েম এবং তার ওপর হিন্দু জমিদার ও মহাজন শ্রেণি গঠন, ঔপনিবেশিক কলকাতা ও ‘বাংলার নবজাগরণ নামক বর্ণহিন্দুর ভাষা, সংস্কৃতি ও ধ্যান ধারণার আধিপত্য, বাংলা ভাগের ইতিহাস এবং কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের রাজনীতি – ইত্যাদি নানান বিষয় নিয়ে গবেষণা ও ভাবনা চিন্তার দরকার আছে। ফলে হিন্দু নিজেকে শ্বাশ্বত কাল থেকেই হিন্দু মনে করে। মুসলমান নিজেকে বাবা আদমের সময় থেকেই মুসলমান ভাবে। উপমহাদেশে তার সুনির্দিষ্ট ইতিহাস জানতে কেউই বিশেষ আগ্রহী নয়। এমনিকি হিন্দু কিভাবে নিজেকে অন্য সম্প্রদায় – বিশেষত মুসলমানের বিপরীতে নিজের পরিচয় নির্ণয় বা নির্মাণ করে সেই বিষয়েও হিন্দু সচেতন নয়। তেমনি মুসলমানও নয়। মুসলমান যা কিছুকে পৌত্তলিকতা কিম্বা তার ধর্মের বিপরীত চর্চা হিসাবে দেখে তার বিপরীতেই নিজেকে মুসলমান হিসাবে উপলব্ধি করে। কিন্তু নির্মাণ করে বলেই তারা সাম্প্রদায়িক হয়ে যায় না। পরস্পরের মধ্যে পার্থক্য ও বৈচিত্র নানান ধরণের দ্বন্দ্ব তৈরি করতেই পারে। সেই দ্বন্দের সুনির্দিষ্ট চরিত্র বিশ্লেষণ করা ও বোঝা দরকার। উমর বলছেন, “হিন্দুদের ওপর আক্রমণ করে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করার যে চেষ্টা বিভিন্ন জায়গায় এখন দেখা যাচ্ছে, তার সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনো সম্পর্ক নেই। এই আক্রমণকে দেশে বিরাজমান লুটপাট, ভূমিদস্যুতা এবং অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতেই বিচার করতে হবে”। একে তিনি সবার মতই অবশ্যই সমস্যা হিসাবে দেখছেন। কোন ফারাক নাই। কিন্তু অন্যদের সাথে তাঁর দেখার ফারাক হল যে তিনি এটাকে আদৌ বাংলাদেশের সাম্প্রদায়িকতার সমস্যা - হিসাবে দেখছেন না। তাঁর ক্যাটাগরি খেয়াল করতে হবে। হিন্দুদের উপর হামলা নির্যাতন মানেই তা সাম্প্রদায়িক নয়। হিন্দুদের উপর আক্রমণকে তিনি সাম্প্রদায়িক বলে মানতে রাজি নন। পরিষ্কার বলছেন। “এক্ষেত্রে এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এ ধরনের আক্রমণ শুধু হিন্দুদের ওপরই হচ্ছে না, এটা আরও বড় আকারে হচ্ছে মুসলমানদের ওপর, যার রিপোর্ট প্রতিদিনই সংবাদপত্রের পাতায় দেখা যায়। হিন্দুরা বাংলাদেশের সমগ্র জনসংখ্যার একটি অংশ। কাজেই দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে জনগণের ওপর যে আক্রমণ হচ্ছে, তার অংশ হিসেবে হিন্দুদের ওপরও আক্রমণ হচ্ছে”। তাছাড়া আক্রমণ শুধু হিন্দুদের ওপরই হচ্ছে না। আরও অনেক বেশি করে হচ্ছে বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতিসত্তার লোকজনের ওপর। উত্তর বাংলার সাঁওতালদের ওপর এই আক্রমণ হচ্ছে। এছাড়া রাখাইন, গারো সহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জাতিসত্তার লোকদের ওপরও এটা হচ্ছে”। একে মোকাবিলার জন্য বদরুদ্দিন উমর জনগণকে নিয়ে ‘প্রকৃত প্রতিরোধ’ গড়ে তুলতে চান। ভূমিদস্যু, লুটপাটকারী দুর্বৃত্তদের কথা না বলে পুরা সমাজকে সাম্প্রদায়িকতার দোষে অভিযুক্ত করা ও কুৎসা রটনার মধ্যে উমর ভয়ানক বিপদ দেখেন। তখন এ হামলার বিরুদ্ধে কোনো প্রকৃত গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলাও সম্ভব হবে না। তাঁর প্রস্তাবঃ “প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে অসাম্প্রদায়িক জনগণের বিরুদ্ধে নয়, এটা করতে হবে ভূমিদস্যু ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে”। একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী হিসাবে উমর খুবই দরকারী কাজের কথা বলছেন, কোন বিমূর্ত তত্ত্ব নয়। এখানেই তাঁর সঙ্গে অন্য বামদের পার্থক্য। সাম্প্রদায়িকতা সম্পর্কে তাঁর যে সংজ্ঞা ও বিবেচনা তা সুনির্দিষ্ট ভাবে ভূমিদস্যু ও লুন্ঠনকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে গণ প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক। এই ক্ষেত্রে তাঁকে সমর্থনই সঠিক এবং এখনকার কর্তব্য। বাংলাদেশে হিন্দু প্রশ্ন ও দিল্লির আগ্রাসন বদরুদ্দিন উমর হঠাৎ এই প্রশ্ন তোলেন নি। বাংলাদেশকে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রেখে ক্রমাগত সীমান্তে হত্যাকান্ড চালিয়ে দিল্লী ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তকে দুনিয়ার সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্তে পরিণত করেছে। দিল্লীকে চিনতে আমাদের আর অসুবিধা হবার কথা নয়। দিল্লির আগ্রাসনের চরিত্র উপমহাদেশের রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই আগ্রাসন, বলা বাহুল্য, নিত্য নিত্যই বাংলাদেশের আভ্যন্তরীণ রাজনীতির দ্বন্দ্ব সংঘাতের সুযোগ নেয়, নিচ্ছে ও নেবে। সেই ক্ষেত্রে হিন্দু নির্যাতন, সাম্প্রদায়িকতা, মন্দির-মঠ ভাঙা ইত্যাদি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচারের মুখ্য বিষয় হয়ে ওঠে। দুনিয়াব্যাপী ইসলামভীতি ও ইসলাম বিদ্বেষের কারণে বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক দেশ হিসাবে প্রমাণ করা সহজ হয়ে ওঠে। আই এসের নামে কুপিয়ে হত্যাকেও কেবল হিন্দুদের উপর আক্রমণ বা সাম্প্রদায়িক সমস্যা হিসাবে দেখানোর চেষ্টা চলছে। এইসব উদ্দেশ্যমূলক। এই সবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন মাত্রা পাচ্ছে এবং নতুন পর্বে প্রবেশ করেছে। সেইসব নজর করা দরকার। অন্যান্যদের সাথে হিন্দুদের উপরও হামলাকে “সাম্প্রদায়িক” না বলতে পারলে হীনমন্যতার কিছু নাই। হিন্দুদের উপর হামলা মানেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। সাম্প্রদায়িক না বললে সমস্যা বা সংকট মোকাবিলা করা যাবে না তাও নয়। বরং আসলে কারা এই সকল হত্যাকান্ডে জড়িত তাদের বরং আড়াল করা হচ্ছে। দিল্লীর আগ্রাসনের অজুহাত ও ভিত্তকেই বরং মজবুত করা হচ্ছে। দিল্লীতে হিন্দুত্ববাদী ক্ষমতার অধিষ্ঠান সাময়িক নয়, ফলে ভারতে শক্তিশালী হিন্দুত্ববাদী ক্ষমতার আগ্রাসন কমবে না। বাড়বে। ভারতে হিন্দুত্ববাদের অধিষ্ঠানকে যারা সাময়িক ভাবেন তারা গোলকায়নের সঙ্গে হিন্দুত্ববাদের ঐতিহাসিক ও অনিবার্য মৈত্রীকে আড়াল করেন। আধুনিক রাষ্ট্র ও রাজনীতির অনুষঙ্গে সিপিএম বা কংগ্রেস মার্কা রাজনীতির পোষাক আধুনিক ভারতে হিন্দুত্ববাদকে আড়াল করে রাখতে পেরেছিল। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই যুগে নব্য হিন্দুত্ববাদের সেটা আর লুকিয়ে রাখার দরকার নাই। ভারতের সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির এই গুণগত রূপান্তরের আলোকে বাংলাদেশের হিন্দু প্রশ্নের মীমাংসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। হিন্দুদের রক্ষা করা বাংলাদেশের বিরুদ্ধে দিল্লীর সর্বগ্রাসী আগ্রাসনের সবচেয়ে সহজ ও বিশ্বাসযোগ্য অজুহাত হয়ে উঠতে পারে। আসলে ‘প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা? – এই লেখায় বদরুদ্দিন উমর ঠিক এই আশংকা ব্যাক্ত করেই তাঁর লেখা শুরু করেছেন। তিনি বলছেন, “বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও তাদের পিতৃসংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) জন্য খুব বেশি দরকার। চরমপন্থী সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে ভারতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী রাখার জন্যই এটা তাদের দরকার। কাজেই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা বলতে যা বোঝায় সেটা না থাকলেও সেই পরিস্থিতি তৈরির জন্য বিজেপি বেশ পরিকল্পিতভাবেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে’। বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গাহাঙ্গামায় বাংলাদেশ ও ভারতের হিন্দুত্ববাদী শক্তি তৎপর। এই বিপদ মোকাবিলা শুধু মুখে নিজেকে অসাম্প্রদায়িক দাবি করার মধ্যে কুলাবে না। বাংলাদেশে হিন্দু প্রশ্ন মীমাংসার সঙ্গে কিভাবে পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের মধ্যে পরিগঠিত উপমহাদেশের নব্য হিন্দুত্ববাদ ও আঞ্চলিক সাম্রাজ্যবাদী উপশক্তি হিসাবে দিল্লীর উত্থান ও রক্তাক্ত আগ্রাসনের প্রশ্ন জড়িত তার বিবেচনা ও মীমাংসা এ কারণেই জরুরী। সে কারনে সাম্প্রদায়িকতা মানে কি, প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা এই সকল প্রশ্ন স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্ন ভাবে তুলে বদরুদ্দিন উমর বাস্তবোচিত ও অগ্রসর চিন্তার নজির রাখলেন। তাঁর লেখার আন্তরিক ও ঘনিষ্ট পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশে হিন্দু প্রশ্নের মীমাংসাকে য়ারেকটি গুণগত পর্যালোচনা স্তরে উন্নীত করতে পারি। কিন্তু যেসব বামপন্থী – এমনকি যারা এককালে তাঁর অনুসারী ছিল তারা তাঁর লেখার প্রতিক্রিয়া জ্ঞাপন করতে গিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল সমালোচনার অধিক কিছু করতে সক্ষম হন নি। নদিতে বাঁধ দিয়ে ও পানি সরিয়ে বাংলাদেশকে শুকিয়ে মারার নীতি, ইসলামি জঙ্গি মোকাবিলার নামে দিল্লী ও পাশ্চাত্য শক্তি যেভাবে ক্ষমতাসীনদের দ্বারা বাংলাদেশে একটি যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরী করে রেখেছে তার কুফল পুরা উপমহাদেশে ছড়াবে। বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের সেই যুদ্ধের উপাদান ও দাহ্য পদার্থ হিসাবে ব্যবহারের পরিণতি শুভ হতে পারে না। অনিবার্য পরিণতি হিসাবে চিরতরে বাংলাদেশের জনগণকে দিল্লীর পদানত রাখার পরিকল্পনা কাজ করবে বলা যায় না, কিন্তু উপমহাদেশকে প্রবল অস্থিতিশীলতার দিকেই দিল্লী ঠেলে দিচ্ছে। ভারতে নিশ্চয়ই দূরদৃষ্টি সম্পন্ন মানুষের অভাব নাই। তাঁরা আশা করি এই সকল বিষয়ে ভাববেন। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের সচেতন ও সজ্ঞান মানুষদের অবিলম্বে সচেতন হয়ে ওঠা জরুরী। এই সকল বাস্তবতা শুধু বাংলাদেশ নয় পুরা উপমহাদেশের জন্যই ভয়ংকর বিপদ তৈরী করেছে। মধ্য প্রাচ্যের সহিংসতা, যুদ্ধবিগ্রহের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে যে বিপদ ত্বরান্বিত করবার জন্য দিল্লী ও বিজেপি তৎপর তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার তাগিদ থেকেই বদরুদ্দিন উমর প্রশ্নগুলো তুলেছেন। এখানেই তাঁর লেখার গুরুত্ব। ১৭ জুন ২০১৬। ৩ আষাঢ় ১৪২৩। শ্যামলী। ---- [১] বদরুদ্দিন উমরের সাম্প্রতিক লেখাগুলোর লিঙ্ক: ‘এটা কি সাম্প্রদায়িকতা?’, লিখেছেন ২৫ মে ২০১৪ সালে, যুগান্তরে; দ্বিতীয় লেখাটি হচ্ছে, ‘বাংলাদেশে প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা?’ । ৪ আগস্ট ২০১৩ তারিখে যুগান্তরে ছাপা হয়েছে ‘হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ফ্যাসিবাদী হামলারই এক নগ্ন রূপ’। উৎসঃ chintaa পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 17 January 2016, Sunday ফরহাদ মজহারঃ কবি মাহমুদ হাছানের জন্ম ১৫ আগস্ট, ১৯৮৭। পিতা হাবিবুর রহমান পেশায় ডাক্তার এবং প্রাক্তন ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান। মাহমুদ হাছানের ছেলেবেলা কেটেছে খাগড়াছড়ির পানছড়ি গ্রামে। পানছড়ি বাজার স্কুল এবং কলেজ থেকে মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিক পাশ করেছিলেন। দর্শনে প্রবল আগ্রহের কারনে ২০০৫-০৬ শিক্ষাবর্ষে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগে ভর্তি হয়েছিলেন। তার একটা পছন্দের কাজ ছিল বয়স নির্বিশেষে বন্ধুদের সঙ্গে দর্শন নিয়ে তর্ক করা। উচ্চভাষী ও তর্কচঞ্চল হাছানের সঙ্গে আমার বন্ধুত্ব এই সুবাদেই। প্রথাগত চিন্তা ও রাজনীতির ব্যর্থতার পর নতুন শতাব্দির শুরু থেকে বাংলাদেশে রাজনীতি সচেতন তরুণদের দর্শনের প্রতি আগ্রহী হবার লক্ষণ স্পষ্ট হতে শুরু করে। মাহমুদ হাছান সেই আরম্ভের প্রথম বিচ্ছুরণের একটি স্ফুলিঙ্গ। মৃত্যুকে এতো অবলীলায় মেনে নেবার পেছনে জীবনের ওপর নিজের কর্তাশক্তির পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রমান করা হাছানের বিবেচনায় ছিল কিনা জানি না। কিন্তু জীবনের পরমার্থের প্রতি তার তীব্র তাগিদ সবসময় আমাকে মুগ্ধ করতো। হয়তো স্থির বা নিশ্চয় কোন মুল্যমানের প্রতি সে নিষ্ঠ থাকতে পারে নি। ইতিহাসে মনুষ্য জীবনের কিম্বা ব্যাক্তি মানুষের কানাকড়ি কোন মূল্য আছে কিনা সে বিষয়ে তার সন্দেহ ছিল কি? পাশ্চাত্য যাকে নীৎশের বরাতে ‘নিহিলিজম’ নামে আখ্যায়িত করে রেখেছে। নীৎশের সঙ্গে মাহমুদ হাছানের তুলনার কোন মানে হয় না, কিন্তু একথা না বলে পারছি না যে নীৎশে আত্মহত্যা করেন নি, শেষ বয়সে পাগল হয়ে মরেছিলেন। এই তথ্য হাছানেরও জানা ছিল। কোন বিষয়ে স্থির থাকা হাছানের স্বভাবে ছিল না। তারপরও ঘন্টার পর ঘন্টা তার কথা শুনতে ক্লান্তি বোধ করি নি। আমার সঙ্গে কুষ্টিয়ায় আখড়াবাড়িতে ছুটে গিয়েছে অনেকবার, বাংলাদেশে কিভাবে লালন ফকির সম্ভব হোল সেটা তার কাছে বিস্ময়ের ব্যাপার ছিল। আশ্বস্ত করেছি বারবার যে ভাবুক হবার জন্য বিদেশি বই পড়া জরুরী নয়, ভাবতে শেখাটাই জরুরী। আর সেটা বাংলাদেশের সাধারণ নিরক্ষর মানুষদের কাছ থেকেই শিখতে হবে। হেইডেগারের ‘হোয়াট ইজ কলড থিঙ্কিং’ পড়তে পারি, কিন্তু বই চিন্তা করা শেখায় না। চিন্তা করতে চাইলে চিন্তাই করতে হবে, এটা বোঝাবার জন্যই হেইডেগার কেতাবটি লিখেছিলেন। হয়তো চিন্তা করতে শেখার পরেই তার পরের পর্যায়– অর্থাৎ মূদ্রন, অক্ষর ও যুক্তির জগতে প্রবেশ আমাদের মতো কলোনির দেশগুলোর জন্য ফলপ্রসূ হতে পারে। নইলে আমরা ‘শিক্ষা’র নামে পাশ্চাত্যের গোলাম ছাড়া আর কিছু হতে পারব না। ‘যুক্তি’ বা ‘গণিত’ দার্শনিক অর্থে চিন্তা বা ভাবুকতা নয়, চিন্তার হাতিয়ার মাত্র। জীবন এক দারুন সম্ভাবনা, যা শৃংখলায় আনতে ব্যর্থ হলে অপচয়ের দিকেই আমরা পা বাড়াই। তরুণদের বলি ফকির লালন শাহ সুস্থ ও সবল শরীরে ১১৬ বছর বেঁচে ছিলেন। সেটা নিজের শরীরের ওপর তার কর্তাসত্ত্বার নিয়ন্ত্রণের জন্যই। এটাই নদিয়ার দেহবাদ। কিন্তু হাছানকে বোঝাতে পেরেছি বলে মনে হয় না। অথচ হাছান দারুন কবিতা লিখত। কেন যে কবি না হয়ে পাশ্চাত্য অর্থে দার্শনিক হতে চাইতো বুঝতে পারতাম না। তার তর্ক শুনে প্রায়ই মনে হোত, ভাবুকতা ও যুক্তিবিদ্যা, কিম্বা ভাবুকতা ও দর্শনের ফারাক ধরতে পারা কঠিন ব্যাপার। ভাবি, বাংলাদেশে কিভাবে তা বোঝানো সম্ভব? যুক্তিকে ভাবের অধীন রেখে ব্যবহার না করে ভাবকে স্রেফ যুক্তির গোলামে পরিণত করা আধুনিক পাশ্চাত্য ‘দর্শন’-এর প্রধান রীতি। ভাব যুক্তিকে ব্যবহার করে, কিন্তু যুক্তির গোলামি করে না। এই তর্ক করে এখন আর কী লাভ! মাহমুদ হাছান বোঝাবুঝি আর ভাবাভাবির বাইরে চলে গিয়েছে। সমসাময়িক আরো ছয় কবিকে নিয়ে ‘মিথের পাখিরা’ নামে একটা কবিতার সংকলন আদর্শ প্রকাশনী থেকে ২০১১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে জাতীয় গ্রন্থমেলা থেকে বের করেছিল হাছান। আমার ভালো লেগেছিলো। কবিতা নিয়ে নিষ্ঠা নিয়ে আর কিছু করেনি। সত্য হোল, মাহমুদ হাছানের সঙ্গে আমার সখ্যতা গাঢ় হয় ২০০৭ সালের সেনা সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার জন্য। লড়াইয়ের নতুন ধরণ নিয়ে হাছান ভাবতো। তার মতো ছেলেমেয়েরা নেতৃত্বে ছিল বলেই সেনা-সমর্থিত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের বিরুদ্ধে ছাত্র আন্দোলন গড়ে উঠতে পেরেছিল। “ছাত্র আন্দোলনের ইউটোপিয়াঃ অগাস্ট অভ্যূত্থান ২০০৭” শিরোনামে সেই ছাত্র আন্দোলনের অভিজ্ঞতার ইতিহাস লিখেছিল সে। এই সময়ে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে তরুণরা কী ভাবছিলো এটা তার গুরুত্বপূর্ণ দলিল। জাতিবাদ ও আধুনিক রাষ্ট্র নিয়ে হাছান ভাবত। ড. আমেনা মহসিনের ‘দ্যা প্রব্লেম অফ ন্যাশনালিজম – দ্যা কেইস অফ চিটাগং হিল ট্রাক্টস বাংলাদেশ’ বইয়ের ওপর একটা আলোচনা লিখেছিল একবার। পাহাড়ি বনাম বাঙালির বিরোধ কিভাবে আধুনিকতা ও জাতিবাদ উসকে দেয়, আর আধুনিক রাষ্ট্র কিভাবে সেই বিভেদকে আরো রক্তক্ষয়ী করে তোলে সে ব্যপারে তার ভাবনা ছিল বিস্তর। যার সবটাই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাক্তিগত অভিজ্ঞতা থেকে বিচার। যতোবার শুনেছি, বারবার তত্ত্ব নিয়ে উদ্বিগ্ন না হয়ে বাস্তবের অভিজ্ঞতা নিয়ে লিখতে বলেছি। ফোনে জানাতো, ‘লিখছি ফরহাদ ভাই, চিন্তা করবেন না’। কিন্তু লিখেছে কি আসলে? মনে হয় না। প্রকট অর্থাভাব, চাকুরি না পাবার অপমান, তার প্রতিভা সম্পর্কে বন্ধুদের সন্দেহ, নিজের শক্তি ও চেষ্টার ওপর আস্থার অভাব ইত্যাদি নানান কারনে তার মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশা ছিল, সন্দেহ নাই। কিন্তু হাছান কেন ২০১৩ সালের ১৪ জানুয়ারি তারিখ রাত ১১টার দিকে কারওয়ান বাজার মাছ বাজারের পাশে রেল ক্রসিংয়ে পারাবত এক্সপ্রেস নামের ট্রেনের সঙ্গে ধাক্কা খেল, সেটা আমাদের কারও জানা নাই। নিছক অনুমান ছাড়া। হাছান যেখানেই থাকুক, তাকে আমরা সবাই ভালবাসি। আমরা অপচয়ে বিশ্বাস করি না। মাঝে মাঝে লাল চালের ভাতের সঙ্গে সবজি আর ডাল নিয়ে যখন বসি, খিল খিল হাসি ভর্তি হাছানের মুখ মনে পড়ে! ‘ফরহাদ ভাই, বাংলাদেশে পনেরো হাজার জাতের ধান আছে, আপনার লাল ভাত মনে করিয়ে দেয়’। পাহাড়ের বিন্নি ধান নিয়ে আগ্রহ ছিল প্রচুর, কিন্তু এই এক দেশ যেখানে বিজ্ঞান আর দর্শনের সঙ্গে মানুষের জীবন ও যাপনের সঙ্গে কোন যোগ নাই। কৃষিকাজকে এখনও পশ্চাতপদ কর্মকাণ্ড গণ্য করা হয়। আবছা কুয়াশায় ক্ষয়ের চিহ্ন দেখি। ভয় পাই। ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি। কেউ যদি আবার পারাবত এক্সপ্রেসে...। উৎসঃ অনলাইন বাংলা পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 09 May 2016, Monday ইসলাম বিদ্বেষীরা ৫ই মে ও হেফাজত সম্পর্কে আমার মূল্যায়নের সমালোচনা করে থাকেন। তাদের জ্বালাটুকু বুঝি। আমি কেন শ্রেণি – অর্থাৎ একে জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াইয়ের দিক থেকে বোঝার চেষ্টা করি সেটাই প্রধান আপত্তির জায়গা। শহর আর গ্রামের দ্বন্দ্ব পুঁজিতান্ত্রিক ব্যবস্থারই দ্বন্দ্ব আর সেটা শহুরে মানুষ আর গ্রামের মানুষের বিরোধ হিসাবে হাজির হতে বাধ্য। যারা শুধু শ্রমিক আর পুঁজির মালিকের দ্বন্দ্ব ছাড়া আর কোথাও শ্রেণি সংগ্রাম দেখেন না তারা শহুরে ধনি আর সুবিধাভোগী মধ্যবিত্তের সঙ্গে গ্রামের শোষিত শ্রেণি আর গরিবের পার্থক্য ও বিরোধ বুঝতে অক্ষম। এর ফলে তৈরি সমাজের দৃশ্যমান রক্তাক্ত বিরোধ চোখে দেখেও তারা দেখেন না, বোঝেন না। তারা যখন শ্রেণি সংগ্রাম নিয়ে ফতোয়া দিয়ে থাকেন, তখন অট্টহাস্য করা ছাড়া উপায় থাকে না। এদের একটাই কথা, তেরো দফার মধ্যে আবার শ্রেণি সংগ্রাম কোথায়! এদের ধারণা শ্রেণি সংগ্রাম শুধু কেতাবে আর দাবিদাওয়ায় থাকে। শ্রেণি সংগ্রাম সমাজের বাস্তবতা বিচারের ক্যাটাগরি। সমাজে শ্রেণি থাকলে শ্রেণি সংগ্রাম থাকবেই। একে চিহ্নিত করা, বোঝা এবং বাস্তবে কী রূপ নিয়ে তার প্রকাশ ঘটছে তা নিষ্ঠার সঙ্গে বিশ্লেষণ ও উপলব্ধি গুরুত্বপূর্ণ। যে রূপ নিয়ে তার আবির্ভাব ঘটে তার মধ্যে মজলুমের লড়াইয়ের সম্ভাব্য সাফল্য কিম্বা সম্ভাব্য ব্যর্থতা দুটোই আগাম শনাক্ত করা সম্ভব। যে কারণে আমি বলে থাকি, হেফাজত কী করেছে সেটা বিশ্লেষণ, ব্যাখ্যা ও বোঝা সম্ভব। কিন্তু হেফাজত আগামি দিনে কি করবে সেটা জালিমের বিরুদ্ধে মজলুমের লড়াইয়ের ঐতিহাসিক তাৎপর্য কতোটা তারা তাদের ইমান আকিদা রক্ষার লড়াইয়ের মধ্যে আত্মস্থ করতে পারবে তার ওপর নির্ভর করবে। যে কোন আন্দোলন-সংগ্রামের সীমা ও সম্ভাবনাও শ্রেণি বিচার দিয়ে আগাম আন্দাজ করা সম্ভব। শ্রেণি ও শ্রেণি সংগ্রাম সমাজ বিশ্লেষণের গুরুত্বপূর্ণ ধারণা। সমাজতত্ত্বের অন্তর্গত। এটা সমাজে সামগ্রিক ভাবে প্রয়োগ ও সমাজকে বোঝার উপায় — তেরো দফার মধ্যে খোঁজার ব্যাপার না। হেফাজতের তেরো দফায় যারা শ্রেণি খুঁজতে শুরু করে, এদের দশা হচ্ছে অন্ধকার ঘরে বিড়াল কোলে নিয়ে বিড়াল খোঁজার মতো ব্যাপার। না পেয়ে বলে ফরহাদ মজহার হেফাজতি, জামাতি। উনি একসময় মার্কসবাদী বিপ্লবী ছিলেন, এখন মৌলবাদী হয়েছেন!! হা হা হা। হাসির চোটে এদের কোলের বিড়ালটাও ম্যাও ম্যাও করতে শুরু করে। হেফাজত তাদের ভাষাতেই কথা বলবে, কার্ল মার্কস কিম্বা লেনিনের ভাষায় না। আমি তাদের ভাষা বুঝতে চাই, কারণ মজলুমের মনোবেদনা বোঝাই আমার কাজ। ইসলামপন্থিরা জিহাদের ভাষাতেই লড়বে, মার্কসবাদ-লেনিনবাদ-মাওসে দং চিন্তাধারা তাদের পরিভাষা না। অতএব একালে বাংলাদেশে কিম্বা বিশ্বে বৈপ্লবিক রূপান্তরের সম্ভাবনা বুঝতে চাইলে ইসলাম নতুন ভাবে পাঠ করতেই হবে। এর কোন বিকল্প নাই। কিন্তু যারা আসলেই মার্কস লেনিন বা মাও পড়েছেন ও জানেন তারা মজলুমের ভাষা বোঝার ক্ষমতা রাখেন। সেটা ধর্মীয় পরিভাষায় হোক, কিম্বা ধর্ম নিরপেক্ষ ভাষায়। ফলে কেন বাংলাদেশের সমাজের শ্রেণি বিরোধ ইসলামপন্থা বনাম ইসলাম বিদ্বেষী ধর্ম নিরপেক্ষতায় ভাগ হয়ে গিয়েছে সেটা শ্রেণি বিচার দিয়ে অবশ্যই বোঝা সম্ভব। গরিব, খেটে খাওয়া মানুষ আর শোষিত জনগণ ইসলামের কথাই বলবে, কারন এই ভাষাতেই তারা চিন্তা করতে অভ্যস্ত। তদুপরি এদেশের ইসলাম বিদ্বেষী তথাকথিত প্রগতিশীল ও কমিউনিস্টরা তাদের সঙ্গে ক্রমাগত বিশ্বাসঘাতকতাই করেছে, এবং এখনও একটি ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার পক্ষে দাঁড়িয়ে সংখ্যাগরিষ্ঠের গণতান্ত্রিক অধিকার — বিশেষত জনগণের বিশ্বাসের অধিকার ও মর্যাদাবোধের বিরুদ্ধে তারা কাজ করে যাচ্ছে।। কাজ নাই তাই খৈ ভাজ। এরা ধর্মের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়িত কুৎসা রটিয়ে বেড়ায়। এদের ধারণা শ্রেণি সংগ্রাম তাদের ফর্মূলা মোতাবেক হতে হবে। আর হতে হবে তাদের শেখানো বুলিতে। মজলুমকে অর্থনৈতিক ভাবে শোষণ ও নিঃস্ব করে যখন তার আত্মিক সম্বল বিশ্বাসকেও ক্রমাগত সেকুলারিজমের নামে আঘাত করা হয়,আর লক্ষ লক্ষ মজলুম তাদের বিশ্বাসের মর্যাদা রক্ষার জন্য প্রতিবাদ জানাতে চিড়াগুড় বেঁধে হেঁটে এসে ঢাকায় প্রতিবাদ জানায় – এরা তখন আর তার অর্থ বুঝতে পারে না। প্রতিটি মানুষেরই আত্মসম্মান জ্ঞান আছে — সে নিছকই অর্থনৈতিক প্রাণি নয়। নবিরসুলদের অপমানকারীদের বিরুদ্ধে মজলুম তাই রুখে দাঁড়ায়, এটা তার শ্রেণির প্রতিরোধের ভাষা হয়ে ওঠে। কারণ হামলাটা আসে তথাকথিত শিক্ষিত, মুক্তবুদ্ধি ও প্রগতিশীলদের কাছ থেকে। উস্কানি ছাড়া যারা আর কোন রাজনীতি জানে না। জনগণের সঙ্গে সম্বন্ধ ও সম্পর্ক স্থাপন এদের উদ্দেশ্য নয়, সাধারণ মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা প্রগতিশীল ও মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায়। যে নবিরসুলদের মজলুম ভালবাসে তাদের মর্যাদা রক্ষার জন্য মজলুম এদের বিরুদ্ধেই নিজেকে কুরবানি দিতে তৈরি হয়ে যায়। — এই ঐতিহাসিক ঘটনার অর্থ ইসলাম বিদ্বেষীদের পক্ষে বোঝা অসম্ভব।ইনসাফ পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:তিন ফুট বাড়ছে সাগরের পানি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ তিন ফুট বাড়ছে সাগরের পানি 11 Oct, 2016 পৃথিবী নামের আমাদের এই গ্রহটির উষ্ণতা বাড়ছে, এটি নতুন কোনো বিষয় নয়। নতুন খবর হলো যতো দ্রুত উষ্ণতা বাড়ছে গত এক হাজার বছরেও ততোটা বাড়েনি। আর এতো দ্রুত বাড়ছে যে, গত বছর বিশ্ব নেতৃবৃন্দ উষ্ণতা বৃদ্ধির হার যে পর্যায়ে রাখার ব্যাপারে একমত হয়েছিলেন, সেই পর্যায়ে রাখা মনে হয় সম্ভব হবে না। এরই মধ্যে তার চিহ্ন স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ বছর সারা পৃথিবীতে প্রচণ্ড গরম পড়ে এবং আমরা সকলেই তা বেশ ভালোভাবেই অনুভব করেছি। ১৯ শতকে সারা পৃথিবীর গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ৩৮ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড বৃদ্ধি পায়। সবচেয়ে ভয়ঙ্কর কথা এই তাপমাত্রা বিপজ্জনক মাত্রার একবারে কাছাকাছি। এতে সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যেতে পারে তিন ফুট। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এই বিপজ্জনক মাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস নির্ধারণ করেছেন প্যারিসে অনুষ্ঠত জলবায়ু সংক্রান্ত বৈঠকে। কিন্তু এই জুলাই মাসেই চরম আকার নেয়। এমন কি, শীত প্রধান দেশের মানুষও অস্থির হয়ে ওঠে সে মাসে। আক্ষরিক অর্থেই, এই আধুনিক যুগে উষ্ণতা পরিমাপ করা শুরুর পর থেকে প্রতিমাসে তাপমাত্রা বেড়ে যায় আগের বছরের উল্লেখিত মাসের তুলনায়। একটি উদাহরণ দিযে বিষয়টি পরিস্কার করা যাক। ২০১৪ সালের জানুয়ারি মাসের তাপমাত্রা তুলনা করা হয়েছে পরের বছরের জানুয়ারি মাসের সঙ্গে। প্রসঙ্গক্রমে উল্লেখ করা যায় যে, আধুনিক যুগে উষ্ণতা পরিমাপ করা শুরু হয় ১৮৮০ সাল থেকে। এতে দেখা যায়, উষ্ণতা বৃদ্ধির রেকর্ড সৃষ্টি হয়েছে প্রতি মাসেই। আরো ভয়ানক বিষয় হলো তাপমাত্রা বৃদ্ধির এই প্রক্রিয়া কিন্তু শুরু হয়েছে অনেক আগেই। নাসার বিজ্ঞানীরা বলছেন, বরফের টুকরো সমুদ্রের পলিমাটি পরীক্ষা করে দেখা যায় যে, সাম্প্রতিক দশকে যেভাবে উষ্ণতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা আগের মিলেনিয়ামের যেকোনো সময়ের চেয়ে অত্যন্ত দ্রুত। এ প্রসঙ্গে মন্তব্য করতে গিয়ে নাসার গডার্ড ইনসস্টিটিউট ফর স্পেস স্টাডিজের পরিচালক গ্যাভিন শমিডিট বলছেন, ‘গত ত্রিশ বছরে আমরা নজীরবিহীন একটি পর্যায়ে চলে গেছি।’ গত এক হাজার বছরেও এভাবে উষ্ণতা কখোনোই বৃদ্ধি পায়নি বলে তিনি উল্লেখ করেন। তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের নিচে রাখার জন্য দরকার খুব তাড়াতাড়ি কার্বনডাইঅক্সাইড নির্গমন কমিয়ে আনা কিংবা প্রয়োজন সমন্বিত জিওইঞ্জিনিয়ারিংয়ের। কিন্ত এ দুটোর কোনোটিই করা সম্ভব নয়। শমিডিট পূর্বাভাস দিয়েছিলেন যে, গত বছরটি হবে সবচেয়ে উষ্ণ। এর জন্য তিনি শতকরা ২০ ভাগ দায়ী করেন এল নিনোর প্রভাবে পরিবর্তনশীল জলবায়ু সংক্রান্ত ঘটনাবলীকে। আক্ষরিক অর্থে শমিডিটের পূর্বাভাস একেবারে অক্ষরে অক্ষরে ফলে গিয়েছিল। গত বছরেই ছিল এ পর্যন্ত রেকর্ড করা বছরগুলোর মধ্যে সবচেয়ে উষ্ণ। এটি ভেঙে ফেলে ১৯১৪ সালের উষ্ণতার রেকর্ড। ‘এক দিনে এই অবস্থা গড়ে ওঠেনি, এটি হলো দীর্ঘমেয়াদী একটি প্রবণতা। এই প্রবণতা থেকে যে পৃথিবী বেরিয়ে আসবে তার লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না, বললেন শমিডিট। এটি ক্ষনস্থায়ী নয়, আগামী এক শ’ বছরের জন্য একটি দীর্ঘস্থায়ী সমস্যা।’ বর্তমান বিশ্বে শমিডিটই হলেন সবচেয়ে উঁচুমানের বিজ্ঞানী যিনি বললেন ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানো সম্ভব হবে না। অথচ দ্বীপদেশগুলোর চাপে ডিসেম্বরের প্যারিস বৈঠকে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এই লক্ষমাত্র নির্ধারণে সম্মত হয়েছিলেন। সম্প্রতি প্রকাশিত এক গবেষণায় দেখা যায়, আর মাত্র পাঁচ বছর যদি বর্তমান মাত্রায় কার্বনডাইঅক্সাই নির্গত হয়, তহলে তাপমাত্রা ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে রাখা আর সম্ভব হবে না। নাসার অঙ্গ সংস্থা ন্যাশনাল ওসেনিক অ্যান্ড অ্যাটমোফেয়ারিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন পরিচালিত জরিপে দেখা যায়, বরফ যুগ থেকে বেরিয়ে আসার পর গত পাঁচ হাজার বছর ধরে তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাচ্ছে চার থেকে সাত ডিগ্রি সেলসিয়াস হারে। গত শতকে এই তাপমাত্রা বেড়েছে ঘরির কাটা ধরে। আর এখন বাড়ছে আগের চেয়ে দশগুণ বেশি হারে। বরফ গলে গিয়ে সাগরের উচ্চতা বাড়তে থাকায় শঙ্কিত মেরু ভল্লুকের মত প্রাণিরা নাসার মতে, উষ্ণতা বৃদ্ধির অর্থ হলো আগামী এক শ’ বছরে বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পাবে কমপক্ষে বিশগুণ দ্রুত গতিতে। এ পর্যন্ত যতো কার্বনডাইঅক্সাইড নির্গত হয়েছে, তাতে এ শতকের শেষ নাগাদ সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বেড়ে যেতে পারে তিন ফুট। অবিশ্বাস্য হলেও সত্য যে, আগামী কয়েক শতাব্দিতে সমুদ্র পৃষ্টের উচ্চতা ৭০ ফুট বেড়ে গেলেও অবাক হওয়ার কিছুই থাকবে না। এতে মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকায় বসবাস করা নাও সম্ভব হতে পারে। রাইজিংবিডি প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 23 Sep, 2016 বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 24 Aug, 2016 বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প, আতঙ্ক 20 May, 2016 কতটা শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু? 18 May, 2016 ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ >> দেশ পরিণত হবে মরুভূমিতে 14 May, 2016 বজ্রাঘাত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা 02 May, 2016 কালও বৃষ্টি হতে পারে 27 Apr, 2016 উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ, হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদী 17 Apr, 2016 বিশ্বজুড়ে ঘনঘন ভূমিকম্প, বড় কম্পনের হুঁশিয়ারি শীর্ষ বিজ্ঞানীর 17 Apr, 2016 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধেয়ে আসছে আকস্মিক বন্যা 16 Apr, 2016 চারটি তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা 22 Mar, 2016 পানি সংকটের ভয়াবহতা বাড়ছে 17 Mar, 2016 যমুনায় হাঁটুজল 23 Feb, 2016 তলিয়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-চট্টগ্রাম! 05 Feb, 2016 তিস্তার সব পানিই নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, এদেশে এখন শুধু বালুচর 29 Jan, 2016 পঞ্চগড়ের পথে পথে গোলাপি-বেগুনি রডোডেন্ড্রনের বাহার 26 Jan, 2016 যানজটে শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভোগে ৭৩% মানুষ 05 Jan, 2016 ২৬ মের মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে? 03 Dec, 2015 ফের সুন্দরবন বিপর্যয়ের শঙ্কা : ৭৪৫ টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে চরে আটকা এমভি শোভন 10 Nov, 2015 কৃষির হুমকি আফ্রিকান শামুক 13 Sep, 2015 ৮০০ বাঁধ তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে! 08 Sep, 2015 মানুষকে ছায়া দেওয়াই যাঁর নেশা 02 Sep, 2015 শুক্রবার থেকে আরো বৃষ্টি! 24 Aug, 2015 ভিডিও >> মরুকরণের দিকে যাচ্ছে ঢাকা! 22 Aug, 2015 এক্সক্লুসিভ ভিডিও >> বিমানের উপর বজ্রপাত পড়লো যেভাবে 14 Aug, 2015 সালফারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাতাস 31 Jul, 2015 ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’: নামকরণের নেপথ্যে 30 Jul, 2015 ঝড়ের তীব্র বেগে উড়ে গেলো মানুষ! 30 Jul, 2015 ভিডিও >> টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ 29 Jul, 2015 সাগরে গভীর নিম্নচাপ>>৩-৪ ফ‍ুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা;আতঙ্কে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ 23 Jul, 2015 ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প >> ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে বাংলাদেশে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: সরকার, সমালোচনা ও গণমাধ্যম Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর test@gmail.com সরকার, সমালোচনা ও গণমাধ্যম 03 August 2016, Wednesday কিছু দিন আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, তার সরকার ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালের পুরনো সব স্থাপনা ভেঙে অত্যাধুনিক ও বিশ্বমানের বহুতল মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল ভবন নির্মাণ করবে। নিঃসন্দেহে এটা সাধুবাদ পাওয়ার মতো একটি পরিকল্পনা। রাজধানী ঢাকার ক্রমবর্ধমান লোকসংখ্যার পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল খুবই অপ্রতুল। আরও অনেক আগেই এরকম পরিকল্পনা নেওয়া উচিত ছিল। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রায় একই নিঃশ্বাসে বলেছেন— ‘এখনই ঐতিহ্যবাদীরা হৈচৈ শুরু করে দেবে। যতই লিখুন, যতই টকশো করুন আমার যা করার তা আমি করবই।’ প্রধানমন্ত্রীর এ কথাটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও একই সঙ্গে দুঃখজনক। গুরুত্বপূর্ণ এ জন্য যে, তিনি নাগরিক সমাজের সমালোচনাকে কী চোখে দেখেন, তা প্রকারান্তরে জানিয়ে দিয়েছেন। দুঃখজনক এ জন্য যে, তার গণতান্ত্রিক সরকার নাগরিক সমাজের সমালোচনায় কর্ণপাত করতে চায় না। তিনি বা তার সরকার শুধু তার দলীয় দৃষ্টিকোণ থেকে সিদ্ধান্ত নেন বা নেবেন, যা গণতন্ত্রের চেতনার সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ নয়। যা একান্ত স্বৈরাচারী বা একনায়কসুলভ। যা প্রত্যাশিত নয়। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বা তার সরকারের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বিতা বেগম খালেদা জিয়া ও তার দল বিএনপির সঙ্গে। যে দল নির্বাচনের মাধ্যমে বর্তমান সরকারকে পরাজিত করে ক্ষমতায় যেতে আগ্রহী। বর্তমান সরকারের যে কোনো কাজের সমালোচনা বিএনপি করে থাকে। যুক্তি দিয়ে হোক যুক্তি ছাড়াই হোক। বিএনপির কাজই হলো সরকারের নানা কাজের সমালোচনা করা। এটা আমাদের দূষিত রাজনীতির একটা লক্ষণ। বাংলাদেশে প্রধান বিরোধী দল কখনো সরকারের ভালো কাজের প্রশংসা করে না। তারা শুধু সরকারের খারাপই দেখে। এটা সব আমলেই দেখা গেছে। বিরোধী দল বা বিএনপির ব্যাপারে সরকারপ্রধান এরকম মন্তব্য করলে তা যুক্তিযুক্ত হতো। কারণ বিএনপি তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। কিন্তু সরকারপ্রধান যদি দেশের বুদ্ধিজীবী, বিশেষজ্ঞ তথা নির্দল নাগরিক সমাজের প্রতিও একই মনোভাব পোষণ করেন তাহলে দেশে কোনো ইস্যুতে গঠনমূলক আলোচনা বা সুষ্ঠু তর্কবিতর্ক আর থাকবে না। আলোচনা ও তর্কবিতর্ক না থাকলে গণতন্ত্র থাকবে কী করে? আমরা এমন এক জাতীয় সংসদ ‘নির্বাচন’ করেছি যেখানে বিরোধী দল বা বিরোধী দলের নেতা সরকারের প্রশংসায় সর্বদা পঞ্চমুখ। প্রশংসনীয় কাজের প্রশংসা করা ভালো। কিন্তু বিরোধী দল যখন সংসদে সরকারের প্রশংসায় প্রতিযোগিতায় নামে তখন তা আর সংসদ থাকে না। আমাদের সৌভাগ্য বর্তমানে বাংলাদেশে টেলিভিশনে টকশো, সংবাদপত্রের কলাম ও মুক্ত সাংবাদিকতার মাধ্যমে সরকারের কিছুটা সমালোচনা করা হয়। এটুকু না থাকলে দেশে গণতন্ত্র চর্চার লেশমাত্র থাকত না, যা বাংলাদেশের ইতিবাচক ভাবমূর্তির জন্য সহায়ক হবে না। নাগরিক সমাজের বিভিন্ন ফোরাম মানববন্ধন, সেমিনার, পথসভা, সমাবেশ, সংবাদ সম্মেলন, স্মারকলিপি প্রদান ইত্যাদির মাধ্যমে নাগরিকদের মতামত ও প্রতিবাদ অত্যন্ত শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের কাছে পৌঁছানোর চেষ্টা করে। লক্ষ্য করবেন, নির্দল নাগরিক সমাজের কোনো কর্মসূচির ফলে শহরের রাস্তায় যান চলাচল বন্ধ হয় না, ট্রাফিক জ্যাম বৃদ্ধি হয় না, পথচারীদের ভোগান্তির কারণ হয় না। অত্যন্ত শান্তিপূর্ণ সব কর্মসূচি। এসব কর্মসূচির একটাই লক্ষ্য থাকে, তা হলো, তাদের (নাগরিক সমাজের) সমালোচনা বা বক্তব্য যেন সরকারের নীতিনির্ধারকদের কানে পৌঁছায়। নাগরিক সমাজের বক্তব্যে যদি কোনো যুক্তি থাকে তাহলে সরকার তা বিবেচনা করবে। এটুকুই শুধু আশা। যেহেতু আমাদের দেশে গণতন্ত্রের চর্চা রয়েছে সেহেতু নাগরিক সমাজ আশা করে সরকার তাদের যে কোনো নীতি বা সিদ্ধান্তের ব্যাপারে সমালোচকদের মতামত ও যুক্তি শুনবে। নাগরিক সমাজ, বিশেষজ্ঞ বা বুদ্ধিজীবী কেউ-ই মেঠো বক্তৃতা বা যুক্তিহীন গলাবাজি করেন না। তারা কোনো জনসভাও করেন না। তারা সংবাদপত্রে লেখালেখি, টিভি টকশো বা সেমিনারের মাধ্যমে তাদের বক্তব্য তুলে ধরেন। সরকারের প্রতিনিধিরা বা সমর্থকরা নাগরিক সমাজের বক্তব্য যুক্তিসহকারে খণ্ডন করতে পারেন। টকশোতে অনেক সময় তা করাও হচ্ছে। এটাই গণতন্ত্র চর্চা। যুক্তিহীন বা তথ্যহীন সমালোচনা কোনো সমালোচনা নয়। এখন প্রধানমন্ত্রী যদি বলেন, ‘আপনারা যাই লিখুন বা টকশোতে সমালোচনা করুন না কেন আমার যা করার তা আমি করবই’— তা শুনে গণতন্ত্রমনা ব্যক্তিমাত্রই উদ্বিগ্ন হবেন। কারণ এটা গণতন্ত্রের ভাষা নয়। কোনো প্রধানমন্ত্রী শুধু ক্ষমতাসীন দলের প্রধানমন্ত্রী নন। তিনি দেশের সব মানুষের প্রধানমন্ত্রী। কাজেই তার দলের বাইরে অন্য দলের বা নির্দল নাগরিকদের মতামতও তাকে শুনতে হবে। সেই সমালোচনায় ও বক্তব্যে যদি যুক্তি থাকে তাহলে প্রধানমন্ত্রী তথা সরকার তার অবস্থান পরিবর্তন করবেন। এটা গণতান্ত্রিক সমাজের প্রত্যাশা। নাগরিক সমাজ, বিশেষজ্ঞ বা বুদ্ধিজীবীরা ক্ষমতা দখলের জন্য বা সরকারকে বিতাড়নের জন্য কোনো কাজ করেন না। সেরকম কোনো লক্ষ্য নাগরিক সমাজের নেই। যদি থাকত, তাহলে তারা বড় দু-তিনটি দলের যে কোনো একটির সদস্য হতে পারতেন। পর্যায়ক্রমে নেতা, এমপি, মন্ত্রীও হতে পারতেন। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দলের সদস্য হতে কোনো বিশেষ যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। কাজেই নাগরিক সমাজকে এ অপবাদ দেওয়ার কোনো সুযোগ নেই। নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা তাদের বিশেষজ্ঞ জ্ঞানের তাগিদে ও দেশপ্রেমের তাগিদে সরকারের কোনো প্রকল্প বা সিদ্ধান্তের সমালোচনা করেন। অন্য কোনো স্বার্থ এর পেছনে কাজ করে না। আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে প্রায়শ একটা কথা বলতে শোনা যায়। তা হলো : ‘নাগরিক সমাজের নেতারা গাড়িতে পতাকা লাগানোর খায়েশে সরকারের সমালোচনা করেন। উপদেষ্টা হওয়ার জন্য নির্দল তত্ত্বাবধায়ক সরকার চান।’ (হুবহু উদ্ধৃতি নয়) এ ধরনের ঢালাও মন্তব্য করা ঠিক নয়। নাগরিক সমাজের কোনো কোনো নেতা হয়তো ‘উপদেষ্টা’ হওয়ার স্বপ্ন দেখেন। কিন্তু উপদেষ্টা হওয়ার জন্যই তিনি সরকারের সমালোচনা করেন, এমন দাবি হাস্যকর। তা ছাড়া এ ধরনের উপদেষ্টার পদ তো মাত্র তিন মাসের জন্য। ওই সময়ে তারা কোনো বড় নীতিগত সিদ্ধান্তও নিতে পারেন না। মন্ত্রণালয়ের রুটিন কাজই তাদেরকে করতে হয়। তিন মাসের উপদেষ্টা হওয়ার জন্য তারা তিন দশক ধরে সংগ্রাম করছেন? উপদেষ্টা পরিষদে বড়জোর ৩০ জন সদস্য যোগ দিতে পারবেন। আন্দোলন তো করছেন ৩০ হাজার। অন্যদের উদ্দেশ্য কী? প্রধানমন্ত্রী হয়তো বুঝতে পারছেন না, রাজনীতি, দল, এমপি, মন্ত্রিত্ব, প্রধানমন্ত্রিত্ব ইত্যাদির প্রতি যাদের কোনো রুচি নেই, আগ্রহ নেই, কেবল তারাই নাগরিকদের পক্ষে আন্দোলন করেন। অন্যান্য দেশেও একই চিত্র। দলের প্রতীক ও দলের সমর্থন ছাড়া মন্ত্রী, এমপি, প্রধানমন্ত্রী বা রাষ্ট্রপতি হতে আর কোনো যোগ্যতার প্রয়োজন হয় না। কিন্তু কবি, সাহিত্যিক, নাট্যকার, অর্থনীতিবিদ, চিন্তক, প্রফেসর, ডাক্তার, প্রকৌশলী, স্থপতি ইত্যাদি হতে অনেক কাঠখড় পোড়াতে হয়। দলের মনোনয়ন পেলেই বুদ্ধিজীবী বা চিন্তক হওয়া যায় না। পিতা বা স্বামীর পরিচয়েও বুদ্ধিজীবী বা চিন্তক হওয়া যায় না। নেতা হওয়া যায়। এই চিন্তক বা বুদ্ধিজীবীরাই নাগরিক সমাজের প্রাণ। তারা তাদের শিক্ষা, জ্ঞান, অভিজ্ঞতা ও মনীষা দিয়ে সরকারের কোনো কোনো কর্মসূচির গঠনমূলক সমালোচনা করেন। সব কর্মসূচির নয়। আবার অন্য চিত্রও দেখা যায়। অনেক বড় মাপের পণ্ডিত বা চিন্তক ব্যক্তি রয়েছেন, যারা সরকারের কোনো কর্মসূচি বা নীতি সম্পর্কে কোনো মন্তব্য করারও প্রয়োজন মনে করেন না। কেন মনে করেন না সেই জবাব তারাই দিতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যে ভাষায় কথাটি বলেছেন, তা গণতন্ত্র সম্মত হয়নি। এটা তিনি পরে নিশ্চয় উপলব্ধি করেছেন। গণমাধ্যম বিভিন্ন জনের মতামত তুলে ধরে সরকারকে সহযোগিতা করে। গণমাধ্যমের সমালোচনা ক্ষমতা দখলের লক্ষ্যে হয় না। কোনো বিরোধী রাজনৈতিক দলের সমালোচনার লক্ষ্য ক্ষমতা দখল হতেও পারে। আমরা একই সঙ্গে যুক্তিহীন ও তথ্যহীন সমালোচনা না করার জন্য সবাইকে অনুরোধ করব। গলাবাজি ও গঠনমূলক সমালোচনা এক জিনিস নয়। নাগরিক সমাজ গলাবাজিতে বিশ্বাস করে না। আশা করব, নাগরিক সমাজের বিভিন্ন ফোরাম সরকারের কোনো প্রকল্প, কর্মসূচি বা সিদ্ধান্তের টেকনিক্যাল সমালোচনার আগে তা নিয়ে যথেষ্ট গবেষণা ও তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করবেন। গবেষণা ও তথ্য-উপাত্তের সমর্থন না থাকলে কোনো টেকনিক্যাল সমালোচনাই লাগসই হয় না। সরকারকে বুঝতে হবে গঠনমূলক সমালোচনা সরকারকে সহায়তাই করে। ভুল পথে যেতে সরকারকে নিবৃত্ত করে। মিডিয়া ও মিডিয়া : আজকাল বিভিন্ন সংবাদপত্র, টিভি চ্যানেল নানা রকম অনুষ্ঠান, প্রতিযোগিতা ও ইভেন্টের আয়োজন করে থাকে। এসব অনুষ্ঠান আয়োজন করা মিডিয়ার কাজ কিনা তা নিয়ে বিতর্ক হতে পারে। কিন্তু আমরা আজ সেই বিতর্কে যাচ্ছি না। আমরা দুঃখের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি, একটি পত্রিকা বা টিভি চ্যানেল আয়োজিত অনুষ্ঠানের বা ইভেন্টের খবর অন্য পত্রিকা বা টিভিতে প্রচার হয় না। ব্যতিক্রম খুব কম। একই মালিকানা গোষ্ঠীর হলে হয়তো প্রকাশিত হয়। কিন্তু সচরাচর প্রকাশিত হয় না। এটা কি ঠিক কাজ হচ্ছে? আমরা এর পেছনে কোনো যুক্তি দেখি না। কোনো টিভি বা সংবাদপত্র একটা ইভেন্টের আয়োজক হতেই পারে। গণমাধ্যম দেখবে ইভেন্টটির সংবাদমূল্য রয়েছে কিনা। গণমাধ্যমের কাছে ‘সংবাদমূল্য’ ছাড়া অন্য কোনো কিছু বিবেচিত হতে পারে না। আয়োজক, প্রধান অতিথি, সভাপতি, অন্যান্য অতিথি কোনোটিই গণমাধ্যমের বিবেচনার বিষয় নয়। তবে পত্রিকা বা টিভিতে নিজস্ব সম্পাদকীয় নীতির কারণে খবরটি ছোট বা বড় করে প্রকাশিত হতে পারে। কিন্তু একেবারেই প্রকাশিত হবে না, তা কিছুতেই মেনে নেওয়া যায় না। সংবাদপত্র বা টিভি এরকম নেতিবাচক আচরণ করলে তার পাঠক ও দর্শক গোষ্ঠী একটি ইভেন্ট সম্পর্কে কিছুই জানতে পারে না। সরকার এরকম আচরণ করলে আমরা সরকারের সমালোচনা করি। কিন্তু সংবাদপত্র বা টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ যখন একটি প্রকাশযোগ্য খবর প্রকাশে বা প্রচারে অনীহা দেখায় তখন সেই আচরণকে আমরা কী বলব? আমাদের দেশের কয়েকটি সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেল বছরে বেশ কয়েকটি বড় মাপের ইভেন্টের আয়োজন করে থাকে। এগুলোর সংবাদমূল্য যথেষ্ট। আশা করি বিভিন্ন পত্রিকা ও টিভি চ্যানেল কর্তৃপক্ষ বিষয়টি বিবেচনা করে দেখবে। বিদেশি মডেল : রাজধানী ঢাকার উত্তরায় বহুতল আবাসিক ভবন নিয়ে একটি টাউনশিপ গড়ে তোলা হচ্ছে। এর বিজ্ঞাপনে মডেল হয়েছেন ভারতীয় ক্রিকেট তারকা সৌরভ গাঙ্গুলী। আমরা জানি বাংলাদেশে সৌরভ গাঙ্গুলীর ভক্তের সংখ্যা কম নয়। তিনি একজন বড় মাপের ক্রিকেট তারকা। কিন্তু বাংলাদেশের ফ্ল্যাট বাড়ির বিজ্ঞাপনে তার ছবি ব্যবহার বা ওই টাউনশিপে ফ্ল্যাট কেনার জন্য তার আবেদন কতটা যুক্তিযুক্ত হয়েছে সেই প্রশ্ন তোলার অবকাশ রয়েছে। এ প্রকল্পের উদ্যোক্তারা বিষয়টি হয়তো একেবারেই ভাবেননি। আমাদের দেশে বিভিন্ন ক্ষেত্রে তারকার সংখ্যা ভারতের মতো না হলেও একেবারে কম নয়। এমনকি ক্রিকেট জগতেও কয়েকজন ‘বড় তারকার’ খ্যাতি পেয়েছেন। আমাদের ধারণা, এই বিজ্ঞাপনটি বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করেছে। মনে হয়েছে, এ দেশে বিজ্ঞাপনের মডেল হওয়ার মতো কোনো তারকা নেই। এ বিজ্ঞাপন দেখে যদি অন্য উদ্যোক্তারা অমিতাভ বচ্চন বা শাহরুখ খানকে মডেল করেন তাহলে অবাক হব না। আমাদের প্রস্তাব : সৌরভের বিজ্ঞাপনটি গণমাধ্যম থেকে প্রত্যাহার করা হোক ও এ দেশি তারকাদের দিয়ে নতুন করে বিজ্ঞাপন প্রচার করা হোক। অথবা অন্য কোনো স্ক্রিপ্টে নতুন করে বিজ্ঞাপনটি তৈরি করা যেতে পারে। আগেও একবার কথাটি উঠেছিল, আজ আবার লিখছি। গণমাধ্যমে প্রচারের আগে (বিশেষ করে টিভি) স্ক্রিপ্ট বা নির্মিত বিজ্ঞাপন কোনো একটি বিশেষজ্ঞ কমিটির মাধ্যমে অনুমোদন করানো উচিত। যদি তা করা না হয়, একটি অমানবিক, স্পর্শকাতর বা অনিচ্ছাকৃত ভুল বার্তার টিভি বিজ্ঞাপন কয়েক শতবার টিভিতে প্রচার হওয়ার আশঙ্কা থাকে। কয়েক কোটি দর্শক (শিশু দর্শকও) শত শতবার বিজ্ঞাপনটি দেখবেন ও প্রভাবিত হবেন। তা কি ঠিক কাজ হবে? তারচেয়ে একটু দেখিয়ে নিলে কি ভালো হয় না? সিনেমা নির্মাতারা কি তাদের ছবি প্রচারের আগে সেন্সর বোর্ডকে দেখাচ্ছে না? সিনেমার চেয়ে টিভি বিজ্ঞাপন অনেক বেশি প্রভাবশালী। তাহলে টিভি বিজ্ঞাপনের বেলায় এই উদারতা কেন? প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী : সংবাদপত্র ও টিভি চ্যানেলের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন আজ একটা বড় রীতি হয়ে উঠেছে। পাঁচ, দশ, পঁচিশ বছর নয় শুধু, প্রতি বছরই ব্যাপক জাঁকজমক করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করা এখন গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানের স্ট্যাটাস সিম্বল হয়ে দাঁড়িয়েছে। পৃথিবীর অন্যান্য দেশে এরকম হয় কিনা জানি না। তবে আমাদের প্রতিবেশী নানা দেশে এরকম কিছু হয় বলে শুনিনি। দেখিওনি। আমাদের গণমাধ্যম প্রতিষ্ঠানগুলো (দু-তিনটি ছাড়া) তেমন কোনো বড় মাপের প্রতিষ্ঠান এখনো হয়ে উঠতে পারেনি। আন্তর্জাতিক মানের প্রশ্ন না তোলাই ভালো হবে। একটি-দুটি দৈনিক পত্রিকা ছাড়া অন্য কোনো দৈনিকের প্রচার সংখ্যা দুই লাখও অতিক্রম করেনি। বাংলাদেশের টিভি চ্যানেলগুলোর দর্শক সম্পর্কে কোনো নির্ভরযোগ্য গবেষণা নেই। তবে সংবাদপত্রের প্রতিবেদন থেকে জানা যায়, বাংলাদেশের টিভি দর্শকদের একটি বড় অংশ ভারতীয় নানা টিভি চ্যানেল দেখতেই বেশি আগ্রহী। বাংলাদেশের টিভি অনুষ্ঠান তারা কমই দেখেন। একটি প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি ক্লাসের ছাত্রছাত্রীদের মতামত জরিপ করে আমি ব্যক্তিগতভাবে জানতে পেরেছি, তাদের দশ ভাগও বাংলাদেশের কোনো টিভি অনুষ্ঠান দেখেন না। হার্ড কপি সংবাদপত্র পড়েন না, কেউ কেউ অনলাইনে পড়েন। এই যখন গণমাধ্যম পরিস্থিতি তখন প্রতি বছর জাঁকজমক করে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন একটু বেখাপ্পা নয় কি? এ ধরনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান পত্রিকার বা টিভির কর্মীদের মধ্যে সীমাবদ্ধ রাখা যায়। বাংলাদেশে গর্ব করার মতো বেশ কয়েকটি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান, এনজিও ও প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান রয়েছে। যাদের রয়েছে আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি ও সম্মান। এরকম একটি প্রাইভেট প্রতিষ্ঠান ‘নোবেল শান্তি পুরস্কারেও’ সম্মানিত হয়েছে। এ ধরনের কোনো বড় মাপের প্রতিষ্ঠানকে প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী বা এ ধরনের প্রচারধর্মী অনুষ্ঠান করতে দেখা যায় না। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উদযাপনের খবর ও ছবি তাদের সংবাদপত্রে যেভাবে প্রকাশ হয়ে থাকে তাও কোনো আদর্শ সংবাদপত্রের জন্য উপযোগী নয়। আমাদের অনেক দৈনিক পত্রিকা যে এখনো সাবালকত্ব অর্জন করতে পারেনি এটা তারই প্রমাণ। সংবাদপত্র যে কোম্পানির ‘নিউজলেটার’ নয়, এটা অনেক সম্পাদক ও প্রকাশক বুঝতে পারেন না। সংবাদপত্রের এ ধরনের আত্মপ্রচার (তিন-চার পৃষ্ঠাজুড়ে ছবি) অনেক পাঠকের রুচিকে আহত করে। সংবাদপত্রের স্বাধীনতার অর্থ আত্মপ্রচারের স্বাধীনতা নয়। বিভিন্ন মত প্রকাশের স্বাধীনতা। প্রত্যেকটি গণমাধ্যম অবশ্যই তাদের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী ঘরোয়াভাবে পালন করবে। কিন্তু তার প্রচারে পরিমিতি বোধ থাকা বাঞ্ছনীয়। প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করার আগে নিজের গণমাধ্যমকে একটি উঁচু মাপের প্রতিষ্ঠানে পরিণত করার প্রচেষ্টা গ্রহণ করা কি উচিত নয়? নৈতিকতা : একটি টিভি চ্যানেলের একটি রিপোর্ট নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। টিভি রিপোর্টার জিপিএ ফাইভ পাওয়া কয়েকজন ছাত্রছাত্রী নিয়ে রিপোর্টটি প্রচার করেছেন। অভিযোগ : ‘টিভি রিপোর্টার ছাত্রছাত্রীদের নানা জ্ঞানের প্রশ্ন করে টিভির পর্দায় তাদেরকে হেয় করেছেন। কারণ ছাত্ররা বেশির ভাগ সাধারণ প্রশ্নেরও সঠিক জবাব দিতে পারেননি। জনসমক্ষে (পর্দায়) ছাত্রদের এভাবে হেয় করা উচিত হয়নি।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এটা নিয়ে নানা সমালোচনা হয়েছে। রিপোর্টটির পক্ষে ও বিপক্ষে দুটি গ্রুপ দাঁড়িয়ে গেছে। সাংবাদিকতার নৈতিকতার দিক থেকে প্রশ্নটি গুরুত্বপূর্ণ। আবার রিপোর্টটির বিষয়ও যে গুরুত্বপূর্ণ, এতে কোনো সন্দেহ নেই। তাহলে কীভাবে রিপোর্টার রিপোর্টটি প্রচার করবেন? এ ব্যাপারে একটা মীমাংসা হওয়া উচিত ছিল। তা হয়নি। শুধু সমালোচনা ও সমর্থনের মধ্যে সাংবাদিকতার নৈতিকতার বিষয়টি হারিয়ে গেল। এ ব্যাপারে রেফারির ভূমিকা পালন করতে পারে বাংলাদেশ প্রেস ইনস্টিটিউট। তাদের পত্রিকা ‘নিরীক্ষায়’ এটা কভার স্টোরি হতে পারে। প্রবীণ সাংবাদিক, বিশেষজ্ঞ, শিক্ষক ও যোগ্য ব্যক্তিদের মতামত নিয়ে তারা একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করতে পারত। এ বিষয়ে রিপোর্টিংয়ের সঠিক পদ্ধতি কী হতে পারত? এভাবে তরুণ রিপোর্টাররা ‘নিরীক্ষা’ থেকে অনেক কিছু শিখতে পারতেন। একটা ঘটনা, প্রকাশিত প্রতিবেদনের বা প্রচারিত টিভি রিপোর্টের ভুলভ্রান্তি চিহ্নিত করে তার ‘শুদ্ধ রূপ’ প্রকাশ করতে পারলে ‘নিরীক্ষা’ তরুণ সাংবাদিকদের কাছে অনেক বেশি আদৃত হতো। ভালো প্রতিবেদনের পাশাপাশি দুর্বল প্রতিবেদনও দৃষ্টান্ত হিসেবে পুনঃপ্রকাশ করা উচিত। যাতে তরুণ সাংবাদিকরা সেরকম প্রতিবেদন আর না লেখেন। তবে দুর্বল প্রতিবেদনের সঙ্গে ওই পত্রিকার সম্পাদক ও রিপোর্টারের বক্তব্যও প্রকাশ করা উচিত। তাদের আত্মপক্ষ সমর্থনের সুযোগ দিতে হবে। আমাদের সংবাদপত্র, টিভি, বেতার ও চলচ্চিত্র নিয়ে বিভিন্ন সময় নানা সমালোচনা ও পর্যালোচনা হয়। কিন্তু সমাধান তেমন পাওয়া যায় না। প্রেস ইনস্টিটিউটের গবেষণা, প্রকাশনা ও ‘নিরীক্ষা’ পত্রিকার মাধ্যমে সমাধানের পথনির্দেশ পাওয়া যেতে পারে। যদি প্রেস ইনস্টিটিউট কর্তৃপক্ষ আগ্রহী হয়। তথ্য মন্ত্রণালয় বা পিআইবি পরিচালনা বোর্ডের সদস্যরা এর প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পারেন। লেখক : মিডিয়া ও উন্নয়ন কর্মী উৎসঃ বিডি-প্রতিদিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 19 Oct, 2016 এনজিওর কণ্ঠরোধের নতুন আইন 23 Feb, 2016 বন্দুকের নলের মুখে সৎ সাংবাদিকতা? 17 Jan, 2016 টিভিতে রাজনৈতিক দলের প্রচার 07 May, 2015 নিরস্ত্র সাংবাদিক কীভাবে দায়িত্ব পালন করবেন? 08 Sep, 2014 শান্তিপূর্ণ বনাম সহিংস আন্দোলন 23 Aug, 2014 সবার আগে দর্শক-শ্রোতাদের কথা ভাবুন 25 Jun, 2014 জলাবদ্ধতা থেকে চট্টগ্রামকে মুক্ত করুন 19 Jun, 2014 শুধু নির্বাচন সুশাসন নিশ্চিত করবে না 04 Jun, 2014 ভোটের রাজনীতিতে তারকারা 16 May, 2014 গুম, খুন রোধ: কিছু করণীয় 27 Apr, 2014 গণতন্ত্রায়ণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা 16 Apr, 2014 এই দিন দিন নয়, আরও দিন আছে... Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: নিজেদের দায়িত্ব Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com নিজেদের দায়িত্ব 20 September 2016, Tuesday এবার ঈদুল আজহার দিন প্রচুর বৃষ্টি হয়েছে। সাধারণত আমি কোন ঈদেই ঢাকায় থাকি না। ঢাকার বাইরে কোন-না-কোন গ্রামে থাকি। যেসব গ্রামে আমরা কাজ করি সেইসব গ্রামে থাকতে চেষ্টা করি। এবার ছিলাম টাঙ্গাইলে নয়াকৃষির ‘রিদয়পুর’ বিদ্যাঘরে। ‘রিদয়’ দেখে প্রায়ই অনেকে ভাবেন আমরা বুঝি বাংলা ভুল করে ‘হৃদয়’ না লিখে ‘রিদয়’ লিখেছি। এতে আমরা বেশ মজা পাই। নামটি আসলে অবনীন্দ্রনাথ ঠাকুরের ‘বুড়োআংলা’ থেকে নেওয়া। যখন নাম দিচ্ছিলাম তখন আমরা খুব ভেবেচিন্তা দিয়েছি তা নয়, তবে অবনীন্দ্রনাথের লেখায় গ্রামের ছবি যেভাবে তুলিতে আঁকা ছবির মতো জীবজন্তু গাছপালা কীটপতঙ্গ ইত্যাদি হয়ে ওঠে সেই লেখালিখির স্বাদ মাথায় গাঁথা ছিল বলে ওভাবেই নাম হয়ে যায়। টাঙ্গাইলে ঈদের আগে থেকেই বৃষ্টি শুরু হয়। ভোরেও বৃষ্টি ছিল। বিদ্যাঘরের দুটো পুকুরই ভরে গিয়েছিল। বৃষ্টির পানি পথ ঘাট ভাসিয়ে নিতে চাইছিল বটে, কিন্তু ঈদের দিন দুপুরের মধ্যেই সজল ভাবটা ফর্সা হয়ে উঠেছিল। গ্রামে বসে বিপুল বৃষ্টি কিভাবে ঢাকাকে ভাসিয়ে নিচ্ছে সেটা বোঝা যাচ্ছিল না। রাতের দিকে ইন্টারনেটে দেখি একটা প্রচার চলছে : ঢাকায় রক্তের নদী বয়ে যাচ্ছে। ঢাকায় বৃষ্টি এমনিতেই একটি কঠিন সমস্যা। ঈদুল আজহার কোরবানি পরিস্থিতিকে দুঃসহ করে তুলতে পারে, সেটা গ্রামে বসে আন্দাজ করা যায়। ঢাকার বেশ কয়েকটি চেনা পত্রিকা ও গণমাধ্যমসহ এই প্রচারণায় সিএনএন, বিবিসি, গার্ডিয়ান, এক্সপ্রেস ট্রিবিউন, এবিসি নিউজ, ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস, ইন্ডিয়া টুডে, আনন্দবাজার পত্রিকা, জিনিউজ আরো অনেকে অংশগ্রহণ করে। ঢাকায় রক্তের নদী বয়ে যাওয়া প্রচার ছিল উসকানিমূলক। অনেকে রক্তের নদীর ছবি ছাড়াও অনলাইনে ভিডিও জুড়ে দেয়। দায় ঢাকা মিউনিসিপ্যালিটির, কারণ সমস্যা ঢাকার পয়ঃনিষ্কাশনের- অধিকাংশ প্রতিবেদন সেটা স্বীকার করার পরেও যেভাবে খবর পরিবেশন করে তাতে ঘুরেফিরে দোষের আঙুল ঈদুল আজহার কোরবানির দিকেই তোলা হয়। কোরবানি না হলে পশুর রক্তও থাকত না আর রক্ত না থাকলে ঢাকায় বৃষ্টির পানিও রক্তের নদীর রূপ নিত না। আর, ঢাকায় রক্তের নদী বয়ে না গেলে সেটা দেশে ও বিদেশে চটকদার খবরও হোত না। এ কারণেই উসকানিমূলক বলেছি। অনেকে স্বীকার করেছে বরাবরই ঢাকার রাস্তায় পশু কোরবানি দেওয়া হয়। এটা নতুন কিছু নয়। চল থাকলেও অতীতে কখনোই রাস্তাগুলো রক্তনদীতে পরিণত হয়নি। এবারের ঈদুল আজহা ঢাকার পয়ঃনিষ্কাশনব্যবস্থার ভয়াবহ দিকটি উদাম করে ছেড়েছে। ভাল। কিন্তু হেডলাইনের ইঙ্গিত হোল এবার কোরবানির কারণে পশুর রক্ত নদীতে পরিণত হয়েছে। এই প্রচারণা দেশের ভেতরে ও বাইরে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক পরিস্থিতির কারণে বিশেষ গুরুত্ব পেয়েছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্তযুদ্ধের একটা পরিস্থিতি বিদ্যমান রয়েছে যেখানে ইসলামপন্থীদের সঙ্গে পাশ্চাত্যের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ চলছে। কাশ্মিরের জনগণের লড়াইকে নিষ্ঠুরভাবে দিল্লি দমন করছে। কারফিউ চলছে দীর্ঘ দিন ধরে। ইসলামবিদ্বেষ আগের মতো আর পাশ্চাত্যে অপ্রকাশ্য নাই। মুসলমানদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য বর্ণবাদী ঘৃণা ফ্রান্সে যেমন বেড়েছে, তেমনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেও বাড়ছে। এই যখন পরিস্থিতি তখন সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান অধ্যুষিত একটি দেশের রাজধানীতে রক্তের নদী বয়ে যাচ্ছে সেটা ছবি ও ভিডিওসহ প্রচারকে হালকাভাবে নেবার উপায় নাই। কিন্তু যা ঘটবার তা ঘটে গিয়েছে। বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ মুসলমান। ফলে সাধারণ ভাবে মুসলমান সম্পর্কে যে ধারণা বিশ্বব্যাপী গড়ে তুলবার চেষ্টা চালানো হচ্ছে ঈদুল আজহার দিন রক্তের নদী বানাবার প্রচার সেই চেষ্টায় ভালই ইন্ধন জুগিয়েছে। এই প্রকার প্রচারের পরপরই ঘটেছে ভারত-নিয়ন্ত্রিত কাশ্মিরের নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছে ভারতীয় সেনাবাহিনীর একটি ব্রিগেড সদর দফতরে হামলা এবং নিউ ইয়র্কে বোমা বিস্ফোরণ। বাংলাদেশের সঙ্গে যোগসূত্র নাই, কিন্তু বিশ্ববাস্তবতার কারণে বাংলাদেশ, নিউ ইয়র্ক, কাশ্মির ইত্যাদির দূরত্ব মুছে যাবার উপক্রম হয়। দুই. আগেই বলেছি ঢাকায় রক্তের নদী বয়ে যাবার প্রচার মিউনিসিপ্যালিটি বা ঢাকা শহরের বর্জ্য ব্যবস্থাপনার সমস্যা। অর্থাৎ অপরিকল্পিত নগরায়নের কুফল, এটা পরিষ্কার। কিন্তু এর দায় ঈদুল আজহার কোরবানি প্রথার ওপর গণমাধ্যমগুলো সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে চাপিয়ে দিয়েছে। এর জন্য গণমাধ্যমকে নিন্দা করে আমরা সান্ত্বনা পেতে পারি, কিন্তু ব্যাপারটা এত সহজ নয়। কোরবানি কি স্রেফ একটি নির্দিষ্ট দিনে গরু জবাই করবার উৎসব মাত্র? এর মধ্য দিয়ে ইসলাম কিভাবে নিজের স্বাতন্ত্র্য প্রতিষ্ঠা করতে চায়? কিভাবে কোরবানি পালন করলে সেই স্বাতন্ত্র্যের গুরুত্ব একালে অন্যদেরও বোঝানো সম্ভব। এগুলো নিছকই ধর্মতত্ত্বের প্রশ্ন নয়, একই সঙ্গে রাজনীতির প্রশ্ন। সেটা দেশের ভেতরে যেমন একই সঙ্গে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির বিষয়ও বটে। ঢাকায় রক্তের নদী বয়ে যাওয়ার খবর বাংলাদেশের মুসলমানদের সম্পর্কে যে ভাবমূর্তি তৈরি করে সেটা উদ্দেশ্যপ্রণোদিত প্রচার বটে, কিন্তু খবরটি তৈরির জন্য ঢাকা শহরের মুসলমানদের দায় নাই, তা বলা যাবে না। এটা শুধু সিটি করপোরেশন আর মেয়রের ঘাড়ে চাপিয়ে দিলে চলবে না। বটেই। আমরা ভেবে দেখতে পারি। ইসলামে ধর্মচর্চার ধরন বা ইসলাম মানা-না-মানা ভিন্ন তর্ক, আমি সেই বিষয়ে যেতে চাইছি না। ধর্মতত্ত্বের তর্ক প্রাজ্ঞ আলেম ওলামারা সেটা করবেন, আমি মোটেও সেই তর্কের অধিকারী নই। কিন্তু দেখা যাচ্ছে পরিস্থিতি ভেদে এমন অবস্থা তৈরি হয় যখন ধর্মতত্ত্বকে গুরুতর রাজনৈতিক প্রশ্নেরÑ যার সঙ্গে একটি জনগোষ্ঠীর নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িতÑ মোকাবিলা করতে হয়। ভেবে দেখুন, রক্তের নদী প্রচার বাংলাদেশের জনগণ সম্পর্কে কী ধারণা গড়ে তোলা হয়েছে। একে স্রেফ ষড়যন্ত্র বলে নিন্দা করলে নিজের আলখাল্লার ময়লা যাবে না। ধর্মে বিশ্বাসীরা যদি তাদের ধর্মের স্বাতন্ত্র্য ও মহিমা রক্ষা করতে চান তাহলে কোরবানি পালন যেমন গুরুত্বপূর্ণ, ঠিক একইভাবে কিভাবে তারা কোরবানি দিচ্ছেন সেটাও খুবই গুরুতর রাজনৈতিক বিষয় হয়ে উঠতে পারে। এবারের ঈদুল আজহাতে ঢাকায় আমরা তা দেখেছি। প্রায় প্রতিটি ফ্ল্যাট বাড়িতে দুই তিন দিন ধরে কোরবানির পশু রাখা হয়েছে। নিচে রাস্তায় কিম্বা গ্যারেজের জায়গায় পশু কোরবানি দেওয়া হয়েছে। যদি আমরা শহরের পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যব্যবস্থা নিরাপদ রাখতে চাই তাহলে কিভাবে কোরবানি দিচ্ছি তাকে আর উপেক্ষা করা যাচ্ছে না। তাহলে কিভাবে কোরবানি দিচ্ছি সেটা শুধু মেয়র কিংবা সিটি করপোরেশনকে ভাবলে চলছে না। আলেম ওলেমাদেরকেও ভাবতে হবে। যে নিন্দার ভাগ বাংলাদেশের কপালে জুটেছে, সেই দায়ের বড় একটি অংশ তাদের নিতে হবে। ঢাকা শহরের মতো একটি ঘিঞ্জি ও বসবাসের জন্য প্রায় অনুপযুক্ত একটি শহরে কিভাবে কোরবানি রক্তের নদী বইয়ে দেবে না, পয়ঃনিষ্কাশনের জন্য হুমকি হবে না তার ধর্মীয় নির্দেশ তাদের কাছ থেকেই আসতে হবে। এবার সুনির্দিষ্ট জায়গায় কোরবানি দেবার নির্দেশ ছিল। কিন্তু ঢাকা শহরের ধনী ও সচ্ছল মধ্যবিত্ত শ্রেণি তাদের ধর্মবিশ্বাস প্রকাশ্যে প্রদর্শন ছাড়া নিজেকে ‘মুসলমান’ ভাবতে অক্ষম। আফসোস। দ্বিতীয় আরেকটি দিকের ওপর আমি জোর দিতে চাইছি। কোরবানির তাৎপর্যের দিক থেকে বিচার করলে ইসলামের ভেতর থেকেই অপরিকল্পিত পশু জবাই অস্বস্তি তৈরি করে। অর্থাৎ একজন মোমিনের পক্ষেও এই অস্বস্তি এড়িয়ে যাবার কোন উপায় নাই। কুপ্রচারের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে ইরাক, সিরিয়া বা লিবিয়া বানানোর বিরুদ্ধে লড়া কর্তব্য। বাংলাদেশের জনগণকে হিংস্র ও দানবীয় করে তোলার বিরুদ্ধে লড়াও খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ। কিন্তু কোরবানির তাৎপর্য স্রেফ ধর্মতাত্ত্বিক নয়। হজরত ইব্রাহিম (আ:) ও তার দুই সন্তানকে নিয়ে যে উপাখ্যান আমাদের কাছে পরিচিত তাকে কেন্দ্র করে আধুনিক নীতিনৈতিকতা ও দর্শনের জায়গা থেকেও বিচারের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। ইহুদি ও খ্রিষ্টীয় চিন্তার পরিমণ্ডলে একালের অনেক বড় বড় দার্শনিক এই কাজে ব্রতী হয়েছেন। তাদের আলোচনার ভিত্তি হচ্ছে হিব্রু কিম্বা নতুন বাইবেল। হিব্রু বাইবেল কিংবা নতুন বাইবেলে হজরত ইব্রাহিম (আ:)-এর কোরবানি সম্পর্কে যে কাহিনী প্রচলিত রয়েছে তার সঙ্গে কোরআনুল কারিমের গুরুতর পার্থক্য রয়েছে। কিন্তু এই পার্থক্যের তাৎপর্য ইসলামের দিক থেকে আলোচনা হয়নি বললেই চলে। না হবার কারণে কোরবানি সম্পর্কে আমাদের প্রথাগত ধারণা অধিকাংশ সময়ই ইহুদি বা খ্রিষ্টীয় উপাখ্যান বা চিন্তার দ্বারা প্রভাবিত। অনেকে মুখে ইসলাম নিয়ে বড় বড় কথা বলেন বটে, কিন্তু যেসব চিন্তা ও ধারণা দ্বারা আমরা প্রভাবিত বৈশ্বিক বাস্তবতার কারণে তা ইসলামের প্রস্তাবনার বিরোধী ও বিপরীত ধ্যানধারণা দ্বারাই তৈরি। যেমন, বাইবেল অনুযায়ী নিজের পুত্রকে কোরবানির নির্দেশ আল্লাহ নিজেই দিয়েছেন। বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষও মনে করে যে আল্লাহ সরাসরি ইব্রাহিম (আ:)কে নিজ সন্তান কোরবানির নির্দেশ দিয়েছেন কিন্তু কুরআনুল কারিমে সূরা ‘সাফফাত’-এ বলা হয়েছে হজরত ইব্রাহিম (আ:)-এর সন্তান যখন তাঁর সঙ্গে ‘কাজ করবার মতো বয়সে’ উপনীত হয়েছেন তখন হজরত ইব্রাহিম তাঁকে বলছেন : “... বৎস, আমি স্বপ্নে দেখি যে, তোমাকে আমি জবেহ করছি, এখন তোমার অভিমত কী বলো? সে বলল, ‘হে আমার পিতা, আপনি যা আদিষ্ট হয়েছেন তাই করুন। আল্লাহ ইচ্ছা করলে আপনি আমাকে ধৈর্যশীল পাবেন’। যখন তারা উভয়ে আনুগত্য প্রকাশ করল এবং ইব্রাহিম তাঁর পুত্রকে কাত করে শায়িত করলেন, তখন আমি তাকে আহ্বান করে বললাম, হে ইব্রাহিম, তুমি তো স্বপ্নাদেশ সত্যই পালন করলে। এভাবেই আমি সৎকর্মপরায়ণদিগকে পুরস্কৃত করে থাকি।” বাইবেল আর কোরআনের ভিন্ন কথন নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হতে পারে। সে তর্ক কোরআন সত্য নাকি বাইবেল সত্য কিংবা আমার ধর্ম অন্যের ধর্মের তুলনায় শ্রেষ্ঠ- সেই সব আত্মম্ভরী তর্ক নয়। কুতর্ক অহঙ্কার ও আত্মপরিচয়ের রাজনীতির হানাহানির মধ্যে আমাদের ঢুকিয়ে দিতে পারে। ভাল-মন্দের তর্ক বাস্তবে আমাদের নিজ নিজ কর্মকাণ্ডের বিচার দিয়েই ঠিক হয়। বরং প্রশ্ন হচ্ছে ধর্মের কিংবা ধর্মসূত্রে পাওয়া উপাখ্যানের তাৎপর্য কিভাবে একটি সমাজে মানুষের চিন্তা ও আচরণকে প্রভাবিত ও গড়ে তোলে সেই দিকটার প্রতি নজর দেওয়া। যার গুরুত্ব অপরিসীম। সেই দিকেই বরং আমি চিন্তাশীলদের নজর দিতে বলব। আল্লাহর নির্দেশ আইন এবং বাইবেল অনুযায়ী তিনি যদি হজরত ইব্রাহিম (আ:)কে নিজ সন্তান কোরবানি দিতে নির্দেশ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটা এক বিশেষ প্রকার দ্বন্দ্বের পরিস্থিতি তৈরি করে। সেই দ্বন্দ্ব হচ্ছে আইন ও নৈতিকতার দ্বন্দ্ব। আইন নির্দেশ দিলেই কি সেটা মানুষ পালন করবে? নাকি তাকে নীতিনৈতিকতার নিরিখে আগে বিচার করবে। আইনেরও নৈতিক বিচার জরুরি। পাশ্চাত্যচিন্তায় এই ধরনের তর্কের প্রাধান্য বাইবেলের উপাখ্যানের সঙ্গে কিভাবে জড়িত তা এ কালের অনেক বড় দার্শনিকদের লেখালিখি থেকে আমরা জানি। আল্লাহ সরাসরি ইব্রাহিমকে কোরবানির নির্দেশ দিয়েছেন, দেখা যাচ্ছে এই কথন কোরআনুল কারিম বলছে না। ইব্রাহিম আ: স্বপ্নে দেখছেন যে তিনি তাঁর সন্তানকে জবেহ করছেন। দেখা যাচ্ছে স্বপ্ন এখানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। তাহলে ইসলামে সাধারণভাবে স্বপ্ন, ইঙ্গিত, ইশারা ইত্যাদি কিংবা সুনির্দিষ্টভাবে এই ধরনের স্বপ্নের তাৎপর্য একটি গুরুত্বপূর্ণ আলোচনার বিষয় হয়ে ওঠার কথা ছিল। পাশাপাশি প্রশ্ন তোলা যায় আইন ও নীতিনৈতিকতার সঙ্গে দ্বন্দ্বের প্রশ্ন তাহলে ইসলাম কিভাবে মোকাবিলা করেছে? ‘তোমার সবচেয়ে প্রিয় বস্তুকে কোরবানি করো’ এই ধরনের আদেশ বাস্তবে বা স্বপ্নে ইব্রাহিম আ: পেয়েছেন এমন কাহিনীর সঙ্গেও ইসলামের কোন সম্পর্ক নাই। মুশকিল হচ্ছে এই সকল দিক নিয়ে গবেষণার মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে। যার ফলে সেকুলার বলি কিংবা ধার্মিক বলি- ইসলাম পালন মানে নিজেকে মুসলমান হিসেবে পরিচয়ের মাধ্যম ছাড়া অধিক কিছু হয়ে উঠতে পারছে না। এ কালের দর্শন, চিন্তা, নীতিনৈতিকতা, রাজনীতি ইত্যাদি ক্ষেত্রে ইসলাম দ্বারা অনুপ্রাণিত চিন্তা নিয়ে অন্যদের সঙ্গে আলোচনার ক্ষেত্র এখনো বিপজ্জনকভাবে সঙ্কীর্ণ হয়ে রয়েছে। সেটা সম্ভব এই প্রাথমিক দিক বিশ্বাস করানোর কাজও কঠিন হয়ে উঠেছে। উসকানিমূলক প্রচারের বিরোধিতা যেমন জরুরি, তেমনি নিজেদের সীমাবদ্ধতার পর্যালোচনাও সমান গুরুত্বপূর্ণ। উৎসঃ নয়াদিগন্ত পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 20 August 2016, Saturday ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় ভারতীয় হাইকমিশনার আসার খবর পেয়ে তরুণ ছাত্রছাত্রীরা তৎক্ষণাৎ একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেয়। সেটা হোল শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভ প্রদর্শন। সেই তাৎক্ষণিক ও স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভের একটি ভিডিও তাঁরা ইন্টারনেটে প্রচার করেন। বলাবাহুল্য, এই ভিডিওটি বিপুলভাবে ছড়িয়ে পড়ে। রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে যে প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ চলছে এই স্বতঃস্ফূর্ত বিক্ষোভ এক দিকে তারই অংশ, কিন্তু অন্য দিকে তার নিজস্ব তাৎপর্য রয়েছে। প্রথমত এই বিক্ষোভ সুনির্দিষ্টভাবে দিল্লির আগ্রাসী ও ঔপনিবেশিক নীতির বিরুদ্ধে। বিক্ষোভের ভিডিওটি জনপ্রিয় হবার প্রধান কারণ হচ্ছে দুটো স্বতঃস্ফূর্ত স্লোগান : ‘গো ব্যাক ইন্ডিয়া’ এবং ‘গো ব্যাক এনটিপিসি’। রামপাল চুক্তি বিরোধিতার এটাই হচ্ছে সারকথা। একই সঙ্গে তারা ‘স্টপ বর্ডার কিলিং’ স্লোগান দিয়েছিলেন। যথার্থ। সীমান্তে দিল্লি আর কত বাংলাদেশী হত্যা করবে? গত ১৬ আগস্ট ভারতীয় দূতাবাসের উদ্যোগে এবং চারুকলা অনুষদের সহযোগিতায় আয়োজিত একটি চিত্রাংকন প্রতিযোগিতার উদ্বোধন উপলক্ষে বেলা ২টার পর থেকে চারুকলায় শিক্ষার্থীদের ওপর নজরদারি বেড়ে যায়। নিরাপত্তার নামে চারুকলায় ঢুকবার মূল প্রবেশপথ ও দেয়ালের ওপরের অংশ কালো কাপড় দিয়ে মুড়ে দেয়া হয়! ছবি আঁকার প্রতিযোগিতার নাম ছিল বাংলাদেশের বর্তমান রাজনৈতিক বাস্তবতায় উসকানিমূলক : India@Bangladesh। কালো কাপড় দিয়ে চারুকলা ঢেকে রাখার ভেতরে ‘বাংলাদেশে ভারত’ আয়োজকদের ভাষায় ‘ইন্ডিয়া অ্যাট বাংলাদেশ’ নামের ছবি আঁকার প্রতিযোগিতা! দারুণ বটে! এনটিপিসি লিমিটেড ১৯৭৫ সালে গঠিত ভারতের একটি রাষ্ট্রায়ত্ত কোম্পানি। ভারতীয় ভাষায় পিএসইউ (Public Sector Undertakings)। আগে এর নাম ছিল National Thermal Power Corporation Limited। তবে এখন সংক্ষেপে এনটিপিসি নামেই পরিচিত। এনটিপিসির ঘোষিত নীতি হচ্ছে : ‘To be the world’s largest and best power producer, powering India’s growth’। অর্থাৎ পৃথিবীর সবচেয়ে বড় বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী কোম্পানি হয়ে ওঠা। কিভাবে সেটা তারা হতে চায় তার বড় একটি নজির হচ্ছে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প। সুন্দরবন ধ্বংস করা তার বাইরে দিক, যেটা সাধারণ মানুষ মোটামুটি বুঝতে পারে। এ নিয়ে যথেষ্ট লেখালেখি হয়েছে। বাকি সত্তর শতাংশ ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত এক্সিম ব্যাংক চড়া সুদে ধার দেবে। যার অর্থায়নের পেছনে রয়েছে ভারত হেভি ইলেকট্রিক কম্পানি। এটি একটি অসম চুক্তি। বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের যোগসাজশে দিল্লির নির্লজ্জ বিনিয়োগ ও অন্যায়ভাবে মুনাফা কামানোর ফিকির মাত্র। অন্য দিকে এর পঞ্চাশ ভাগ মালিকানা দিল্লির। এই প্রকল্পের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবার নামে দিল্লি কার্যত পুরা সুন্দরবনের ওপর এক প্রকার অলিখিত নজরদারি ও দখলদারি কায়েম করতে চাইছে। নদীপথ ও সমুদ্রপথে কয়লা পরিবহনের ফলে পরিবেশের বিপর্যয় নিয়ে যথেষ্ট লেখালেখি হয়েছে। কিন্তু যে বিষয়টি চরমভাবে উপেক্ষিত হয়েছে সেটা হচ্ছে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও জাতীয় নিরাপত্তার প্রশ্ন। বঙ্গোপসাগরকে কেন্দ্র করে চীন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ভারতের মথ্যে তীব্র প্রতিযোগিতা চলছে। নদীপথে ও সমুদ্রপথে শুধু কয়লা আনা-নেয়া হবে সেটা বঙ্গোপসাগরের ভূরাজনৈতিক ও সামরিক বাস্তবতার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বাস করা কঠিন। বিশেষত এই প্রকল্পের মালিকানা কাগজে কলমে দিল্লির। দিল্লি তার সম্পত্তি রক্ষার জন্য এই প্রকল্প কেন্দ্র করে যেকোনো ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে। দুর্বল দেশ হিসেবে বাংলাদেশের কিছুই করার থাকবে না। এ কারণে ‘গো ব্যাক ইন্ডিয়া’ স্লোগান বা রণধ্বনি সারা বাংলাদেশেই ধ্বনিত হয়েছে। দিল্লি সমর্থিত শাহবাগী রাজনীতির পরে এটাই প্রথম শিক্ষিত মধ্যবিত্ত তরুণদের রাজনীতির তাৎপর্যপূর্ণ রূপান্তরের ইঙ্গিত। দিল্লি সমর্থিত শাহবাগের আন্দোলন আর রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প বা ভারতীয় আগ্রাসনবিরোধী আন্দোলনের মধ্যে এখানেই গুরুতর পার্থক্য। এই আন্দোলন সম্পর্কে শেষ কথা বলার সময় আসেনি। কিন্তু বেশ কয়েকটি কারণে আমি এই বিক্ষোভকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ মনে করি। সে সম্পর্কে দুই একটি কথা বলে রাখতে চাইছি। দুই যারা রামপালে দিল্লির কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন তারা নিজেরা এ ধরনের বিক্ষোভের তাৎপর্য নিয়ে আগেই ভেবেচিন্তে আন্দোলন শুরু করেছেন সেটা আমার দাবি নয়। বিক্ষোভটি ঘটে যেতে পেরেছে বলে আমরা তার তাৎপর্য নিয়ে এখন আলোচনা করতে পারছি। ইতিহাস বেইলি রোডের মঞ্চে অভিনয় করবার জন্য আগেই লিখে রাখা কোন নাটকের স্ক্রিপ্ট নয়। সমাজের দ্বন্দ্ব, সংঘাত, স্ববিরোধিতা ও নানাবিধ টানাপড়েনের মধ্য দিয়েই ইতিহাস তার চেহারা দেখায়। তত্ত্ব বা মতাদর্শের গুরুত্ব আছে, কিন্তু তত্ত্ববাগীশ বা মত প্রচারক হওয়ার মধ্যে একালে বিশেষ গৌরব নেই। আগাম তৈরি কোনো তত্ত্বের খাপের মধ্যে ফেলে বর্তমানের বিচার কিম্বা কোনো মতাদর্শের মানদণ্ড দিয়ে চলমান আন্দোলন সংগ্রামকে স্বীকৃতি বা নাকচ করা একালে মূর্খতার চর্চা মাত্র। বরং বর্তমানকে আমলে নিয়ে নিজের অনুমান ও সিদ্ধান্তকে ক্রমাগত প্রশ্ন ও পর্যালোচনা করাই একালে জরুরি কাজ। আমি বারবার বলেছি সুন্দরবন কেন্দ্র করে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে যে আন্দোলন আমি তাকে নিঃশর্ত সমর্থন করি। এর কারণ হচ্ছে কার্ল মার্কসের কাছ থেকে বর্তমানকে বিচার করবার পদ্ধতি সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা। সেটা হোল, তত্ত্ববাগীশতার চেয়ে সঠিক কর্মসূচিগত পদক্ষেপ অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ। সেটাই ইতিহাস তৈরি করে। রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন সে কারণে এই সময়ের রাজনীতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা। এই আন্দোলন সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন অতিক্রম করে এখন ‘গো ব্যাক ইন্ডিয়া’র রূপ নিচ্ছে। এটা ছিল এই আন্দোলনের স্বাভাবিক ও অনিবার্য পরিণতি। এই মুহূর্তে এটাই বাংলাদেশের অধিকাংশ মানুষের মনের কথা। তা স্বতঃস্ফূর্তভাবে তাৎক্ষণিক সিদ্ধান্তে তরুণদের মুখ থেকে উচ্চারিত হচ্ছে, এটাই বাংলাদেশের রাজনীতির দিক পরিবর্তনের ইঙ্গিত। বাংলাদেশের মানুষের মনে গো ব্যাক ইন্ডিয়া বিপুল আশার সঞ্চার করবে। প্রথমত এটা কোনো পরিকল্পিত বিক্ষোভ নয়, ফলে বাংলাদেশের সাধারণ মানুষের মনের কথাই গো ব্যাক ইন্ডিয়া স্লোগানের মধ্য দিয়ে ধ্বনিত হয়েছে। এটা ভারতীয় হাইকমিশনারকে শোনানো জরুরি কাজ ছিল। দ্বিতীয়ত তরুণেরা হাইকমিশনার যে কর্মসূচিতে এসেছিলেন সেখানে যেতে কেউ তাকে কোনো বাধা দেয়নি। তিনি শুধু দিল্লির কর্মচারী নন, একই সঙ্গে ভারতীয় জনগণের প্রতিনিধি, এই আন্দোলন ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে নয়। বরং ভারতের জনগণকে বুঝতে দেয়া কিভাবে দিল্লির আগ্রাসী নীতি পুরা দক্ষিণ এশিয়াকে অস্থিতিশীল করে দিচ্ছে। বাংলাদেশকে কাশ্মির বানানোই দিল্লির পরিকল্পনা। এটা রুখে দেয়াই বাংলাদেশের এখনকার প্রধান ও একমাত্র রাজনীতি। তৃতীয়ত পুলিশি হামলা হলে হতে পারত, কিন্তু এই বিক্ষোভে কোন ধস্তাধস্তি নেই। তাহলে পুলিশকেও বুঝতে হবে যে তারাই আসলে বাংলাদেশের আইন শৃঙ্খলা বহাল রাখার ক্ষেত্রে প্রধান সমস্যা। তাদের সহিংস ভূমিকাই অধিকাংশ ক্ষেত্রে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি করে। হয়তো বিক্ষোভের সিদ্ধান্ত জানাজানি না হওয়ার কারণে বিক্ষোভকারীদের পুলিশি সহিংসতার মুখোমুখি হতে হয়নি। কিন্তু তারা প্ল্যাকার্ড নিয়ে শান্তিপূর্ণভাবে তাদের স্লোগান দিয়ে গেছেন। এটা গুরুত্বপূর্ণ। হাসানুল হক ইনুর জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল একসময় ভারতীয় হাইকমিশনারকে অপহরণ করার মতো ‘জঙ্গি’ তৎপরতায় নিয়োজিত হয়েছিল। তার উপসংহার হয়েছে মৃত্যু, রক্তপাত, জেল ও জুলুমে। হাসানুল হক ইনু এখন দিল্লি সমর্থিত শেখ হাসিনার মন্ত্রিসভার একজন গুরুত্বপূর্ণ মন্ত্রী। পুরানা ইতিহাসগুলো মনে রাখতে হবে, নইলে এখন আমি এই শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভকে কেন তাৎপর্যপূর্ণ বলছি সেটা বোঝা যাবে না। চতুর্থ দিক হচ্ছে, সুন্দরবন রক্ষা কিম্বা সাধারণভাবে প্রাণ ও প্রকৃতির সুরক্ষার রাজনীতি আর রামপাল কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরোধিতার মধ্যে বিরাট পার্থক্য আছে। বিক্ষোভকারীরা সুন্দরবন ধ্বংস করে বিদ্যুৎকেন্দ্র চান না সেই স্লোগান দিয়েছেন। তাহলে তাঁরা কি কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র চান? শুধু শর্ত হচ্ছে সেটা সুন্দরবন ধ্বংস করে কিম্বা ক্ষতি করে নয়। তাহলে অন্যত্র সরিয়ে নিয়ে প্রাণ ও প্রকৃতির ক্ষতি হলেও তাঁরা কি তা মেনে নেবেন? সেই কথাই জ্ঞানে কিম্বা অজ্ঞানে তারা তাদের স্লোগানের মধ্য দিয়ে বলছেন। তার মানে সুন্দরবন ছাড়া বাংলাদেশের অন্য কোন অঞ্চলের প্রকৃতি বা পরিবেশের প্রাণ ও প্রাণের বৈচিত্র্য ধ্বংস করা যাবে, কিন্তু সুন্দরবন ‘মহাপ্রাণ’। এই তথাকথিত ‘মহাপ্রাণ’ ধ্বংস করা যাবে না। ‘সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল চাই না’- এই স্লোগানের উহ্য কথাটা হচ্ছে রামপাল অন্য কোথাও হোক, আপত্তি নেই, তবে সুন্দরবনের ধারে কাছে নয়। কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎ উৎপাদন অন্য কোনো অঞ্চলের প্রাণ ও প্রকৃতি ধ্বংস করে হোক। আমরা বিদ্যুৎ চাই, কিন্তু কিন্তু সুন্দরবন রক্ষা করে করা হোক। অন্যত্র। ‘সুন্দরবন ধ্বংস করে রামপাল চাই না’ স্লোগানের এটাই মর্মার্থ। সকলে প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষার রাজনীতি করবেন, এটা আমার দাবি কিম্বা আবদার নয়। এটাই বলতে চাইছি যে সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ, কিন্তু সেটা এখনো প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষার আন্দোলনে রূপান্তরিত হয়নি। এই গুরুত্বপূর্ণ আন্দোলনের সারকথা হচ্ছে রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প দিল্লির আগ্রাসী ও ঔপনিবেশিক নীতির নির্লজ্জ অভিপ্রকাশ। এই আগ্রাসনের বিরোধিতাই এই আন্দোলনের মৌলিক তাৎপর্য। সে কারণে ভারতীয় হাইকমিশনারকে ‘গো ব্যাক ইন্ডিয়া’ প্ল্যাকার্ড দেখানো, কিম্বা সুন্দরবন রক্ষার আন্দোলনে যারা দিল্লিবিরোধী স্লোগান দিচ্ছেন তাদের রাজনৈতিক সচেতনতা ও সজ্ঞান অবস্থানটাই এই আন্দোলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। একে প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষার রাজনীতি বলে বাহবা দিলে ক্ষতি নেই, যদি আসলে সেই রাজনীতিটা কী এবং কিভাবে তার বিকাশ ঘটানো সম্ভব তা নিয়ে আমরা ভাবনাচিন্তা শুরু করি। আন্দোলন সেই ভাবনাচিন্তার সুযোগ করে দিচ্ছে। চিন্তাশীল তরুণেরা নতুন করে ভাবতে পারছে। সুন্দরবনের প্রতি দরদ প্রকৃতি ও পরিবেশ সম্পর্কে শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণির রোমান্টিক আকুতি মাত্র। এতেও আমি কোনো অন্যায় দেখি না। প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষার রাজনীতির আরম্ভ এভাবে অবশ্য হতেই পারে। এভাবেই হয়। ফলে একে নিন্দা করার কিছু নেই। কিন্তু রোমান্টিক ‘মহাপ্রাণ’ ধারণার সীমাবদ্ধতা এবং প্রাণের স্তরবিভাগ তৈরি অর্থাৎ প্রাণ ও মহাপ্রাণের মধ্যে হায়ারার্কি বানানোর বিপদ সম্পর্কে সচেতন থাকা সম্পর্কে শুরু থেকেই সাবধান ও সতর্ক থাকতে হবে। বিশেষত যারা প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষার রাজনীতির গুরুত্ব ও তাৎপর্য টের পেয়ে গেছেন এবং সেই রাজনীতি বিকশিত করতে বদ্ধপরিকর, তাদের এই ক্ষেত্রে সজ্ঞান ও সতর্কতা জরুরি। সুন্দরবন সম্পর্কে রোমান্টিক মৃত মিউজিয়ম মার্কা চিন্তা প্রাণ ও প্রকৃতির রাজনীতির সঙ্গে মোটেও সঙ্গতিপূর্ণ নয়। প্রাণ ও প্রকৃতি বিধ্বংসী বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই, কিন্তু সুন্দরবনে বা সুন্দরবনের কাছে হোক সেটা চাই না তাই কি? তাহলে কি সেটা আমাদের বাড়ির কাছে নেবো আমরা? আমাদের নিজ গ্রামে বাস্তবায়ন করবো? এটা আগামীর বিপ্লবী তারুণ্যের রাজনীতি হতে পারে না। বরং জীবাশ্মভিত্তিক সভ্যতা অর্থাৎ প্রাণ ও পরিবেশবিধ্বংসী বিশ্বব্যবস্থা সম্পর্কে আগে প্রশ্ন করতে শিখতে হবে আমাদের। জানতে হবে পরিবেশবিধ্বংসী জীবাশ্ম জ্বালানি (fossil fuel) ভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিভিলাইজেশান নিরন্তর প্রাণ ও প্রকৃতির খোদ ভিত্তির বিনাশ ঘটিয়ে চলেছে। আমরা আজকাল জলবায়ুর বিপর্যয়ের কথা শুনছি। প্রতিদিন কোনো না কোনো প্রাণের প্রজাতি বা পরিবার বিলুপ্ত হচ্ছে, প্রজাতি হিসেবে মানুষ শেষাবধি টিকে থাকবে কি না সেটাই এখন প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে উঠছে। প্রশ্ন হচ্ছে জীবাশ্মভিত্তিক সভ্যতার রূপান্তর ঘটানো কি সম্ভব? কিভাবে কোথায় সেই রূপান্তরের কাজ আমরা শুরু করব? সেটা কি এখনই শুরু করতে পারি? নিজেদের জীবনযাপন বদলানোর কাজ তো এখন থেকেই শুরু করতে হবে। শুধু রাস্তার আন্দোলন যথেষ্ট নয়। কিভাবে থাকি, কী খাই, কিভাবে চলি- এসব কিছুই আমাদের নিত্য জীবনযাপনের প্রতিটি মুহূর্তের মধ্যেই প্রতিরোধের চরিত্র থাকতে হবে। সুন্দরবনের বিনাশ এই প্রকল্প শুরুর মধ্য দিয়ে শুরু হচ্ছে না। সেই বিনাশ শুরু হয়েছে বহু আগে থেকেই। সুন্দরবনে বসতি নির্মাণ ও আধুনিক জীবনযাপনের ফল হিসেবে চকরিয়া সুন্দরবন ধ্বংস হয়েছে অনেক আগে। সেখানে কোনো ভারতীয় কম্পানি ছিল না। বিশ্বব্যাংক, আইএমএফের রফতানিমুখী উন্নয়ন নীতির কারণে আমরা চিংড়ি চাষের প্রকল্প নিয়েছি। চকরিয়া সুন্দরবন সেই উন্নয়নের তোড়ে দশ বছরের মধ্যেই বিরান হয়ে গেছে। খুলনা, সাতক্ষীরা, বাগেরহাট এলাকা চিংড়ির ঘেরের কারণে নোনা পানি ঢুকেছে সুন্দরবনে। সুন্দরবন ধ্বংসের দিকেই যাচ্ছে। যদি আমরা তা দ্রুত প্রতিহত করতে না পারি। রফতানিমুখী উন্নয়ননীতি এবং এখনকার নয়াবাজারবাদী কাছাখোলা অর্থনীতিই তার কারণ। এখন যারা সুন্দরবনের প্রতি রোমান্টিক মমতায় কাতর তারা সুন্দরবন রক্ষার জন্য চিংড়িঘেরের বিরুদ্ধে স্থানীয় জনগণের লড়াই সংগ্রামের ইতিহাস সম্পর্কে আদৌ কিছু জানে কি না আমার সন্দেহ আছে। শুধু আন্দোলন নয়, স্থানীয় জনগণ নতুন করে সুন্দরবনের গাছ ও প্রজাতি পুনরায় ফিরিয়ে আনার জন্য কাজ করছে দীর্ঘদিন ধরে। ফলে স্থানীয় জনগণের লড়াই-সংগ্রামের সঙ্গে শহরের মধ্যবিত্ত শ্রেণির সংগ্রামকে যুক্ত করবার নীতি ও কৌশল নিয়ে ভাবা দরকার। বন ধ্বংস হয়ে গেলে তাকে আগের অবস্থায় পাওয়া যায় না ঠিক, কিন্তু তাকে নতুন করে গড়া যায়। সেই বিজ্ঞান ও কর্মদক্ষতা স্থানীয় জনগণের কাছ থেকে শেখার দরকার আছে। তিন মধ্যবিত্ত শ্রেণী সবে প্রাণ ও পরিবেশ সম্পর্কে সচেতন হয়ে উঠছে। সুন্দরবন সম্পর্কে তাদের বই পড়ার জ্ঞান বা ভ্রমণবিলাসী রোমান্টিক ধারণা থাকতেই পারে। থাকুক। এটা খারাপ কিছু নয়। কিন্তু প্রাণ ও প্রকৃতির রাজনীতি জীবাশ্মভিত্তিক ইন্ডাস্ট্রিয়াল সিভিলাইজেশানের পর্যালোচনা ও তার সম্ভাব্য বিকল্প ও রূপান্তর নিয়ে ভাবনা। আমাদের সেই দিকে কয়েক কদম এগিয়ে যেতে হবে। ছেঁড়া সুতাগুলো জোড়া দেয়াও এখন বড় কাজ। আন্দোলনকারীদের কাছে এখনো সেটা স্পষ্ট কি না জানি না। তবে সেই দিকগুলো নিয়ে ভাবতে হবে। দিল্লি নির্লজ্জভাবে বাংলাদেশকে উপনিবেশে পরিণত করেছে। সেটা বাংলাদেশ ঘিরে কাঁটাতারের বেড়া দেয়া, নিত্য সীমান্তে আইনবহির্ভূতভাবে বাংলাদেশীদের হত্যা, কানেক্টিভিটির নামে বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে রাস্তা বা করিডোর বানানো, বিপুলসংখ্যক ভারতীয়ের বাংলাদেশে চাকরি পাওয়া ও অর্থ পাচারের ব্যবস্থা করা, বাংলাদেশের ব্যবসাবাণিজ্য বিনিয়োগ ও কুক্ষিগত করা, আমদানি রফতানির ক্ষেত্রে বাংলাদেশের ভাগে ঘাটতি বাড়াতে থাকা ইত্যাদি। তাই গো ব্যাক ইন্ডিয়া স্রেফ ঢাকা শহরের স্লোগান থাকেনি। সারা বাংলাদেশেই ধ্বনিত হয়েছে। সুন্দরবন রক্ষা আন্দোলনের সাফল্য এখানেই। তবে আন্দোলনের শ্রেণির প্রশ্ন মনে রাখলে আন্দোলনের সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে আমরা হুঁশিয়ার থাকতে পারি এবং তা অতিক্রম করে যাবার নীতি ও কৌশল নিয়ে ভাবতে পারি। সাধারণত মধ্যবিত্ত শ্রেণি যখন পরিবেশ ও প্রকৃতির কথা বলে তখন সে নদী, জমি, পাহাড়, সুন্দরবন, বাঘ, ভাল্লুক, পাখি ইত্যাদি নিয়ে খুব কাতর হয়ে যায়। ব্যাপারগুলো খুবই রোমান্টিক ও রাবীন্দ্রিক ব্যাপার ধারণ করে। তারা ‘প্রাণবৈচিত্র্য’ বলে না, বলে ‘জীববৈচিত্র্য’ ... অথচ প্রাণবৈচিত্র্য মানে শুধু জীবজন্তুর বৈচিত্র্য না ... বরং বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংস্কৃতি, জীবনব্যবস্থা, খাদ্যব্যবস্থা, প্রকৃতির সঙ্গে তাদের দৈনন্দিনের সম্পর্ক ইত্যাদি সুরক্ষার ব্যাপারও বটে। খেয়াল করা দরকার মধ্যবিত্ত শ্রেণির কাছে রামপাল বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপনবিরোধী আন্দোলনের প্রতীক হয়ে গেছে বাঘ- রয়েল বেঙ্গল টাইগার। অথচ গরান বনের (Mangrove Forest) প্রাণবৈচিত্র্য রক্ষা খুবই জটিল ব্যাপার। দুই এক প্রজাতির পশু বা পাখি রক্ষা করা না। এই খবরটুকুও অনেকের কানে আসেনি যে ধরিত্রি সম্মেলনে (Earth Summit 1992) বায়োডাইর্ভাসিটি সংজ্ঞায়িত করতে গিয়ে ইন্ডিজেনাস অ্যান্ড লোকাল কমিউনিটির কথা বারবার জোর দিয়ে বলতে হয়েছে। মানুষের প্রসঙ্গ বাদ দিয়ে ‘জীববৈচিত্র্য’ সংক্রান্ত ধারণা পাতি বুর্জোয়া ও করপোরেট ধারণা। ‘জীববৈচিত্র্য’ আর ‘প্রাণবৈচিত্র্য’ ইংরাজি বায়োডাইভার্সিটিত শব্দটি অনুবাদের সমস্যা নয় পরিবেশ আন্দোলন বিশেষত প্রাণ ও প্রকৃতি সুরক্ষার রাজনৈতিক মর্ম বুঝবার অভাব ও পার্থক্য। যে কারণে বাঘ রক্ষার আন্দোলন যত গুরুত্বপূর্ণ মনে হয় সেই তুলনায় মধ্যবিত্ত শ্রেণি কৃষকের বীজ রক্ষার আন্দোলনকে অত গুরুত্বপূর্ণ মনে করে না। বীজ ও খাদ্যব্যবস্থা চোখের সামনে দুই এক দশকের মধ্যেই বহুজাতিক বীজ কম্পানির অধীনে চলে যাওয়ার পরেও তাদের হুঁশ নেই। রাজনীতিতে চিন্তার এই অভাব বা খামতিগুলো বোঝার দরকার আছে। শেখ হাসিনা যখন ২০১০ সালের জানুয়ারি মাসে ভারতে গিয়েছিলেন তখন দিল্লির সঙ্গে যে যৌথ ঘোষণায় স্বাক্ষর করেছেন রামপাল প্রকল্প তারই অন্তর্গত। এটা নিছকই বিদ্যুৎ উৎপাদন বা উন্নয়ন প্রকল্প নয়, দিল্লির আগ্রাসী রাজনৈতিক প্রকল্পেরই অংশ। যারা এখন রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন তাদের মধ্যে অনেকে আছেন, যারা ক্ষমতাসীন সরকারের নীতির সমর্থক কিম্বা ক্ষমতাসীনদের ইসলামবিদ্বেষী রাজনৈতিক বলয়ের অন্তর্গত, বাইরের কেউ নয়। তারা দিল্লিবান্ধব রাজনীতি করেন। তাই না? ফলে তাদের পক্ষপাতদুষ্ট অস্বচ্ছ রাজনৈতিক অবস্থান এই আন্দোলনের গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক মর্ম বিকাশের ক্ষেত্রে বড় একটা প্রতিবন্ধকতা হয়ে আছে। দিল্লির প্রশ্নে তাদের কণ্ঠ নিচু খাদে নেমে গিয়ে প্রায় নিঃশব্দ হয়ে যায়। আর প্রায় সবাই ক্ষমতাসীন সরকারের বিরোধী যে গণরাজনীতি তারও বিরোধী। এটাই বাস্তবতা। ঠিক কি না? রাজনীতির কথা বললে শ্রেণির প্রশ্ন ছাড়াও এসব বিবেচনাও মাথায় রাখতে হয়। জাতীয় সম্পদ রক্ষার ক্ষেত্রে এত বছর ধরে গড়ে তোলা অতি গুরুত্বপূর্ণ এ আন্দোলনের পেছনে এ কারণেই পুরা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করা যায়নি। কারণ শেষতক মধ্যবিত্ত শ্রেণি একে একটি বিশেষ ধারার রাজনীতি বহন করবার কাজেই খাটাচ্ছে গণমানুষের সামষ্টিক স্বার্থ এতে গৌণ হয়ে যাবার বিপদ থেকে যায়। এই দিকগুলো মনে রাখলে কেন আমি গো ব্যাক ইন্ডিয়া, গো ব্যাক এনটিপিসি, স্টপ বর্ডার কিলিং ... এই স্লোগানগুলোকে গুরুত্বপূর্ণ মনে করি সেটা বোঝা যাবে। আমাদের সীমাবদ্ধতা আরো আছে। এটা আমাদের ট্র্যাজেডি যে সেকুলার ও ধর্মপন্থার বাইনারি অতিক্রম করে আমরা গণমানুষের স্বার্থের সঙ্গে সরাসরি সম্পৃক্ত রামপাল জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ ইস্যুতে ঐক্যবদ্ধ হতে পারছি না। ইসলামপন্থীরা পরকালের বেহেশতের স্বপ্নে বিভোর, ফলে আল্লাহর দুনিয়ায় আল্লাহ নিজে মানুষের জন্য যেসব অপূর্ব সৃষ্টির নজির রেখেছেন তাকে রক্ষার কোন ঈমানি দায়িত্ব তাঁরা বোধ করেন না। সুন্দরবন রক্ষা কিম্বা প্রাণ ও প্রকৃতির সুরক্ষা নিশ্চিত করা তাদের ঈমানি পরীক্ষার ক্ষেত্র হতে পারত, কিন্তু এই কঠিন পরীক্ষা তারা দিতে নারাজ। অন্য দিকে বঙ্গীয় সেকুলারদের ইসলামবিদ্বেষ এবং গণমানুষের আধ্যাত্মিক জীবন এবং অমীমাংসিত নানাবিধ প্রশ্নের প্রতি উপেক্ষা আন্দোলনকে শেখ হাসিনার ঘরের লড়াইয়ে পরিণত করে রেখেছে। এই সীমাবদ্ধতা যত তাড়াতাড়ি তরুণরা ভাঙতে পারবে ততই আগামীতে জাতীয় নেতৃত্বের ফাঁকা জায়গাগুলো তাদের নিজের হাতে তুলে নিতে সক্ষম হবে। বিএনপিও ক্ষমতায় যাবার জন্য ভারত তোষণনীতি গ্রহণ করেছে এবং রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের বিরুদ্ধে কিছু বলছে না এটা তাদেরকে জনগণের কাছ থেকে শুধু দূরে সরিয়ে দিচ্ছে না, রাজনৈতিকভাবে অপ্রাসঙ্গিক করে তুলছে। বাংলাদেশের জনগণকে যারা সামনে এগিয়ে নিয়ে যেতে তৈরি হয়ে উঠছে তারা কোনো দলের প্রতি মুখাপেক্ষী থাকবে না। এটা আমরা আশা করতে পারি। আন্দোলনে ক্ষমতাসীনদের সাময়িক সুবিধা হতে পারে। তারা দিল্লিকে দেখাতে পারছে এত বিরোধিতার পরেও রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়নে সরকার বদ্ধপরিকর। বাংলাদেশের সেকুলার ও কমিউনিস্টরা বিএনপির নেতৃত্বে বিশদলীয় জোটকে দমন করার জন্যে শেখ হাসিনাকে চায়, আবার ক্ষমতাসীনরা রামপাল প্রকল্প বাস্তবায়ন করলে তাকেও মেনে নিতে পারছে না। খুবই ট্রাজিক অবস্থা। এই দ্বৈত নীতি নিয়ে রামপালের বিরুদ্ধে গুরুত্বপূর্ণ এই আন্দোলন সফল হবে না, এটা ঠিক। কিন্তু এই সীমাগুলোই তো তরুণরা ভাঙছে। অতএব গো ব্যাক ইন্ডিয়া, গো ব্যাক এনটিপিসি। স্টপ বর্ডার কিলিং। যথেষ্ট হয়েছে। আর নয়। উৎসঃ নয়াদিগন্ত পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: ৩০শে ৮ পেতেও ব্যর্থ ৯০% শিক্ষার্থী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> ক্যাম্পাস ৩০শে ৮ পেতেও ব্যর্থ ৯০% শিক্ষার্থী 11 Oct, 2016 মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক পরীক্ষায় জিপিএ ৫ পেয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় পাস করতে পারছে না বেশির ভাগ শিক্ষার্থীরা। যেখানে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র তৈরি করা হয় মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের পাঠ্য পুস্তক অবলম্বনে। বিশ্ববিদ্যালয় ভর্তি পরীক্ষায় বেশির ভাগ ইউনিটে বাংলা ও ইংরেজিতে আলাদাভাবে পাস করতে হয়। সেখানে উভয় বিষয়ে ৩০ নম্বরের মধ্যে পাসের জন্য অন্ত ৮ নম্বর প্রয়োজন। অথচ সেই নম্বর তুলতেও ব্যর্থ ৯০ শতাংশ শিক্ষার্থী। এ বছর কলা অনুষদের অধীন ‘খ’ ও বাণিজ্য অনুষদের অধীন ‘গ’ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষার পর ফলাফলে দেখা গেছে, খ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে মাত্র ১১ শতাংশ পাস নম্বর তুলতে পেরেছে। বাকি ৮৯ শতাংশই ফেল করেছে। ‘গ’ ইউনিটে পাস করেছে ৫.৫২ শতাংশ শিক্ষার্থী, ফেল করেছে ৯৪.৪৮ শতাংশ। যদিও পাস করা সবাই বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পাবে না। কলা অনুষদের ১৭টি বিভাগে আসন আছে দুই হাজার ৩৩৩টি। বাণিজ্য অনুষদে আসন এক হাজার ২৫০টি। বাণিজ্য অনুষদের অনুত্তীর্ণদের বড় অংশই ইংরেজিতে পাস নম্বর পায়নি। এ অনুষদে ইংরেজিতে ৩০ নম্বরের মধ্যে ১০ পেলে পাস ধরা হয়। ভর্তি সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভর্তি পরীক্ষায় খ ও গ ইউনিটে বিষয়ভিত্তিক বাংলা ও ইংরেজিতেই বেশির ভাগ পরীক্ষার্থী ফেল করে। ইংরেজি ও বাংলা ব্যাকরণ অংশের বেশির ভাগ প্রশ্নের উত্তর দিতে পারে না তারা। ব্যাকরণ থেকে কিছু সূক্ষ্ম প্রশ্ন থাকে, যা উচ্চ মাধ্যমিকে বা সৃজনশীল সিলেবাসে শিক্ষার্থীরা পড়ে না। উচ্চ মাধ্যমিকের ক্ষেত্রে সৃজনশীল পদ্ধতির পরীক্ষায় সূক্ষ্ম প্রশ্নের উত্তর কাছাকাছি হলেও নম্বর পাওয়া যায়। কিন্তু ভর্তি পরীক্ষায় যথাযথ উত্তর না দিতে পারলে নম্বর পাওয়া যায় না। ভুল উত্তরের জন্য নম্বরও কাটা যায়। গত কয়েক বছরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের খ ও গ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার ফলাফলে দেখা গেছে, অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১০-১৫ শতাংশের বেশি পাস করতে পারেনি। এ বছর খ ইউনিটে ৩৩ হাজার ২৫৫ জন পরীক্ষার্থীর মধ্যে বাংলা ও ইংরেজিতে পাস নম্বরসহ উত্তীর্ণ হয়েছে মাত্র তিন হাজার ৮০০ জন। বাকি ৩১ হাজার শিক্ষার্থীই পাস করতে পারেনি। গ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষায় অংশ নিয়েছিল ৪০ হাজার ২৩৪ জন শিক্ষার্থী। তাদের মধ্যে ইংরেজিতে পাস নম্বর পেয়ে উত্তীর্ণ হয়েছে দুই হাজার ২২১ জন। ৩৮ হাজার ১০ জন পরীক্ষার্থীই ফেল করেছে। ২০১৫ সালে গ ইউনিটে পাসের হার ছিল ১৭.৫৬ শতাংশ, ২০১৪ সালে ছিল ২০.৬১ শতাংশ এবং ২০১৩ সালে ছিল ১১.৪০ শতাংশ। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকে জিপিএ ৫ পেলেও শিক্ষার্থীরা ভর্তি পরীক্ষায় কেন উত্তীর্ণ হতে পারছে না, তা নিয়ে নানা কথা হচ্ছে। কেউ কেউ বলছে, সৃজনশীল প্রশ্নে নির্দিষ্ট কিছু অধ্যায় পড়ে শিক্ষার্থীরা পরীক্ষায় অংশ নেয়। পুরো বিষয় আয়ত্বে না থাকায় ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন বুঝতে পারে না তারা। এক ঘণ্টার পরীক্ষায় ১০০টি প্রশ্নের উত্তর করার সময় চাপে জানা উত্তরও ভুল করে শিক্ষার্থীরা। ভুল উত্তরের জন্য নম্বর কেটে নেওয়ায় শেষ পর্যন্ত পাস নম্বর পায় না অনেকে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় ২০০ নম্বরের মধ্যে ১২০ নম্বরের পরীক্ষা নেওয়া হয়। মাধ্যমিক ও উচ্চ মাধ্যমিকের ফলের ভিত্তিতে বাকি ৮০ নম্বর নির্ধারিত হয়। খ ইউনিটে ১২০ নম্বরের পরীক্ষায় বাংলা, ইংরেজি ও সাধারণ জ্ঞান এই তিন বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। বাংলায় ৩০, ইংরেজিতে ৩০ এবং সাধারণ জ্ঞানে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক মিলে ৬০ নম্বর থাকে। তিনটি বিষয়ে প্রশ্ন এলেও বাংলা ও ইংরেজিতে পৃথকভাবে বাধ্যতামূলক পাস করতে হয়। এ ইউনিটে বাংলা ও ইংরেজিতে পাস নম্বর ৮, সব মিলিয়ে পাসের জন্য ৪৮ নম্বর পেতে হয়। গ ইউনিটের পরীক্ষায় ইংরেজিতে পাস নম্বর ১০। ১০০টি প্রশ্নের প্রতিটির মান ১.২। একটি প্রশ্নের ভুলের জন্য ০.৫ নম্বর কেটে নেওয়া হয়। বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশ্ন বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ভর্তি পরীক্ষায় বাংলা অংশে বাংলা ব্যাকরণ ও পাঠ্য বই, ইংরেজি অংশে ইংরেজি ব্যাকরণ ও পাঠ্য বই এবং সাধারণ জ্ঞান অংশে বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে চলমান কিংবা ইতিহাস বিষয়ে প্রশ্ন থাকে। ইংরেজি অংশে পাঠ্য বই ও ব্যাকরণের বাইরে একটি অনুচ্ছেদ দেওয়া হয়। সেই অনুচ্ছেদ পড়ে শিক্ষার্থীদের প্রশ্নের সমাধান করতে হয়, যা উচ্চ মাধ্যমিক পর্যায়ে শিখে আসে শিক্ষার্থীরা। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক আখতারুজ্জামান বলেন, ভর্তি পরীক্ষায় পাসের হার কম হওয়ায় বিষয়টি নানা প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে। কিন্তু এক ঘণ্টার পরীক্ষায় শিক্ষার্থীদের মেধা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে পারে না। অনেক সময় শিক্ষার্থীরা চাপের মধ্যে থাকে। জানা বিষয়ের উত্তরও ভুল হতে পারে। উচ্চ মাধ্যমিকের সিলেবাস থেকেই প্রশ্ন করা হয়। প্রশ্নপত্র তৈরির সময় খুব সতর্ক থাকা প্রয়োজন। ভালো ফল থাকা সত্ত্বেও প্রশ্নের উত্তর দিতে না পারায় শিক্ষার্থীদের মধ্যে হতাশা সৃষ্টি করে।’ সূত্র : কালের কণ্ঠ প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 20 Oct, 2015 এনালগ থেকে ডিজিটাল 07 Oct, 2015 পরীক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন আসছে 24 Jun, 2015 বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে বেহাল চিত্র স্কুলের সুবিধাও নেই ইউনিভার্সিটিতে 17 Jun, 2015 প্রাথমিকে বৃত্তি কেলেঙ্কারি 01 Nov, 2016 চবির প্রশ্নপত্রের উত্তর ব্লার, ছোট ছোট দাগ! 27 Oct, 2016 ২০৪ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় 26 Oct, 2016 জেএসসি ও জেডিসি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র ফাঁসকারীরা শনাক্ত: শিক্ষামন্ত্রী 19 Oct, 2016 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় ফেলের রেকর্ড 17 Oct, 2016 ঢাবির ‘খ’ ইউনিটে প্রথম হয়েও আরবী নিয়েছেন আবদুল্লাহ! 11 Oct, 2016 আওয়ামী লীগ নেতাদের তত্ত্বাবধানে পিস স্কুলের স্থানে নতুন স্কুল 10 Oct, 2016 মেডিকেল ভর্তি পরীক্ষায় অকৃতকার্য ৫৬ হাজার পরীক্ষার্থী 01 Oct, 2016 ঢাবির ‘গ’ ইউনিটে ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নে এত ভুল! 22 Sep, 2016 ছাত্র ভর্তির দাবিতে কলেজে ছাত্রীদের তালা 05 Sep, 2016 বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও টিউশন ফি লাগামহীন 22 Aug, 2016 প্রধানমন্ত্রীর কার্যাল‌য় ঘেরাও কর্মসূচিতে সমর্থন ছাত্রলীগের 18 Aug, 2016 ‘ফেল করার মতো’ প্রশ্ন হয়নি বলে এত পাস? 18 Aug, 2016 পাসের হার, জিপিএ-৫ দুটোই বেড়েছে 18 Aug, 2016 এইচএসসিতে পাসের হার ৭৪.৭০ শতাংশ 26 Jul, 2016 বন্ধ হলো দারুল ইহসান, শিক্ষার্থীদের কী হবে? 25 Jul, 2016 শিক্ষক সংকটে মেডিক্যাল শিক্ষাব্যবস্থা! 23 Jul, 2016 জামায়াতের শিক্ষক নিয়োগে সুপারিশ করে আ'লীগ, ছাত্রলীগ ! 11 Jul, 2016 নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ৭৫% শিক্ষার্থীই বিষাদগ্রস্ত 10 Jul, 2016 শিক্ষার্থীদের জঙ্গি হওয়া ঠেকাতে চাপে থাকা নর্থ সাউথে নতুন নীতি 01 Jul, 2016 ঢাবি ভিসির বাসায় ছাত্রলীগ নেতারা 01 Jul, 2016 ছাত্রলীগের আন্দোলন নিয়ে মুখ খুলছেন ভিসি আরেফিন 01 Jul, 2016 ঢাবির দুই শিক্ষককে ছাত্রলীগের জুতা নিক্ষেপ 01 Jul, 2016 ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিকীর গাড়ি ভাঙচুর করেছে ছাত্রলীগ 30 Jun, 2016 মেধাবীরা উঠে আসছে না বাংলাদেশের শিক্ষা ব্যবস্থায় 29 Jun, 2016 ঢাবিতে শিক্ষক শান্তনু মজুমদারের যৌন কেলেঙ্কারি ফাঁস : ছাত্রীকে কক্ষে ডেকে নিপীড়ন! 24 Jun, 2016 প্রাথমিকের বই ছাপা হবে ভারত থেকে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: স্যার সলিমুল্লাহ : কী করে ভুলি তাকে? Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম আবু এন এম ওয়াহিদ awahid2569@gmail.com স্যার সলিমুল্লাহ : কী করে ভুলি তাকে? 23 September 2016, Friday নবাব স্যার সলিমুল্লাহর নাম শোনেননি, বাংলাদেশে শিক্ষিত লোকদের মধ্যে এমন কাউকে খুঁজে পাওয়া যাবে না বলেই আমার বিশ্বাস। উনিশ শতকের শেষ এবং বিশ শতকের গোড়ার দিকে ব্রিটিশ-ভারতে পিছিয়ে পড়া পূর্ব বাংলার অর্থনীতি, সমাজ, শিক্ষা ও সংস্কৃতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য স্যার সলিমুল্লাহর অবদানের ব্যাপ্তি ও গভীরতা অনেকেরই অজানা। নতুন প্রজন্মের জন্য এ কথা বিশেষভাবে প্রযোজ্য। আমি নিজেও জানতাম না, আমাদের দেশের সাধারণ মানুষদের রাজনৈতিক, সামাজিক ও অর্থনৈতিক অধিকার আদায়ের সংগ্রামে তিনি কেবলই তার অগাধ সম্পদ বিলিয়ে দেননি, তার চেয়েও অনেক বড় অবদান রেখে গেছেন, যার পরিমাপ সম্ভব নয়। এটাও স্পষ্ট যে, আধুনিক বাংলাদেশ রাষ্ট্র ও তার সমাজ বিনির্মাণে স্যার সলিমুল্লাহ অবদানের কোনো মূল্যায়নও হচ্ছে না। সলিমুল্লাহ মেডিক্যাল কলেজ, আহসানউল্লাহ ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ (বর্তমানে বাংলাদেশ প্রকৌশল ও কারিগরি বিশ্ববিদ্যালয় সংক্ষেপে বুয়েট), সলিমুল্লাহ এতিমখানা, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় এবং এর সলিমুল্লাহ মুসলিম হল, নারায়ণগঞ্জের সলিমুল্লাহ রোডÑ এ ছাড়া বাংলাদেশের আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের সাথে তার নাম ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। তিনি ঢাকাসহ পূর্ববাংলার বিভিন্ন জায়গায়, মসজিদ, মাদরাসা, ছাত্রদের হোস্টেল, হাসপাতাল ও এতিমখানা প্রতিষ্ঠা করে গেছেন। পূর্ব বাংলার কৃষি উৎপাদন ও হস্তশিল্প সম্প্রসারণের জন্য নিজ খরচে ঢাকায় কৃষিপণ্য ও হস্তশিল্প প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিলেন। স্যার সলিমুল্লাহর পূর্বপুরুষ খাজা আব্দুল হাকিম, মোগল সম্রাট মোহাম্মদ শাহর আমলে কাশ্মিরের গভর্নর ছিলেন। ১৭৩৯ সালে নাদির শাহ যখন ভারত আক্রমণ করে, তখন খাজা আব্দুল হাকিম সিলেট অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করেন। তারই বংশধর খাজা আব্দুল গনি নবাবী প্রতিষ্ঠা করেন। প্রথম থেকেই ঢাকার নওয়াব পরিবার পূর্ব বাংলার অনগ্রসর মুসলিম জনগোষ্ঠীর আর্থসামাজিক উন্নয়নের ব্যাপারে ছিলেন খুবই মনোযোগী, মুক্তহস্ত ও যতœশীল। স্যার সলিমুল্লাহর জন্ম ১৮৭১ সালের ৭ জুন ঢাকার আহসান মঞ্জিলে। তার পিতা নওয়াব খাজা আহসানউল্লাহ এবং মা ছিলেন বেগম ওয়াহিদুন্নেছা। তার দাদা নওয়াব খাজা আব্দুল গনি মিঞার নামেই ঢাকার সচিবালয়ের দক্ষিণের রাস্তার নাম। পারিবারিক ঐতিহ্য অনুযায়ী, সলিমুল্লাহ ছোটবেলায় ঘরোয়া পরিবেশে উর্দু, আরবি, ফারসি ও ইংরেজি শেখেন। ১৮৯৩ সালে তিনি ইংরেজ সরকারের অধীনে ডেপুটি ম্যাজিস্ট্রেটের চাকরি নিলেও মাত্র দুই বছর পর সরকারি কাজে ইস্তফা দিয়ে ময়মনসিংহে ব্যবসায় শুরু করেন। ১৯০১ সালে পিতার মৃত্যু হলে সলিমুল্লাহ আহসান মঞ্জিলে ফিরে এসে নবাব হয়ে পুরো জমিদারির দায়িত্ব নেন। তখন কলকাতাকে রাজধানী করে পূর্ব বাংলা, পশ্চিমবঙ্গ, বিহার ও উড়িষ্যা মিলে এক বিশাল প্রদেশ। এর মধ্যে পূর্ব বাংলা (অর্থাৎ আজকের বাংলাদেশ) ছিল সবচেয়ে উপেক্ষিত ও পিছিয়ে পড়া এলাকা। এ অঞ্চলের মুসলমানদের ভাগ্য পরিবর্তনের লক্ষ্যে পূর্ব বাংলা ও আসামকে নিয়ে একটি নতুন প্রদেশ গড়ার জন্য ১৯০৩ সালে শুরু হয় বঙ্গভঙ্গ আন্দোলন। এভাবে স্যার সলিমুল্লাহ প্রত্যক্ষ রাজনীতিতে জড়িয়ে পড়েন। ওই সময় তিনি বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের সপক্ষে জনমত গঠনের জন্য সহযোগীদের নিয়ে সারা পূর্ব বাংলা চষে বেড়িয়েছেন। তারই ডাকে ১৯০৪ সালের ১১ জানুয়ারি আহসান মঞ্জিলে পূর্ব বাংলার নেতৃস্থানীয় হিন্দু-মুসলমান ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ সভা বসে। ওই সভায় তিনি বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনার কিছু বিষয়ের বিরোধিতা করে তার দৃঢ় মতামত ব্যক্ত করেন। এক মাস পর বড়লাট লর্ড কার্জন ঢাকা আসেন এবং স্যার সলিমুল্লাহর আতিথেয়তা গ্রহণ করেন। তখন বড়লাটের সাথে আলাপ আলোচনার মাধ্যমে স্যার সলিমুল্লাহ বঙ্গভঙ্গ পরিকল্পনার সব খুঁটিনাটি বিষয়ের চূড়ান্ত মীমাংসা করেন। সেই সমঝোতা অনুযায়ী ১৯০৫ সালের ১৬ অক্টোবর ঢাকাকে রাজধানী করে পূর্ববাংলা ও আসাম নিয়ে একটি নতুন প্রদেশ গঠিত হয়। ফলে পূর্ব বাংলার ভীষণভাবে পিছিয়ে পড়া সাধারণ জনগণের মধ্যে ১৯০৫-১৯১১ সাল পর্যন্ত স্কুল-কলেজে ভর্তির হার বেড়ে যায় ৩৫ শতাংশের ওপরে। প্রাদেশিক সরকারের আনুকূল্যে এখানকার ব্যবসায়ী উদ্যোক্তারা নতুন উদ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য শুরু করেন। ১৯০৬ সালে আঞ্চলিক সওদাগররা চট্টগ্রাম-রেঙ্গুন জাহাজ সার্ভিস চালু করেন। ওই সময়ে পূর্ব বাংলার মানুষদের জন্য এর প্রত্যেকটি ছিল সফলতার একেকটি মাইলফলক, যা সম্ভব হয়েছিল বঙ্গভঙ্গের কারণেই। যেদিন বঙ্গভঙ্গ অধ্যাদেশ কার্যকর হয়, সেদিনই সলিমুল্লাহর সভাপতিত্বে ঢাকার নর্থব্রুক হলে মুসলমান নেতাদের সভায় ‘মোহামেডান প্রোভিন্সিয়াল ইউনিয়ন’ নামে মুসলমানদের একটি রাজনৈতিক প্ল্যাটফরম তৈরি হয়। এর ওপর ভিত্তি করেই স্যার সলিমুল্লাহর নেতৃত্বে ও পৃষ্ঠপোষকতায় পরের বছরই ঢাকায় জন্ম নেয় সর্বভারতীয় মুসলিম লীগের। সলিমুল্লাহর আমন্ত্রণে ১৯০৬ সালের ডিসেম্বর ২৭-৩০, এই তিন দিন নবাবের শাহবাগের বাগানবাড়িতে সর্বভারতীয় সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ওই সম্মেলনে দুই হাজার মুসলিম ডেলিগেট ঢাকায় আসেন। অতিথিদের থাকা-খাওয়া এবং সম্মেলনের অন্যান্য খরচ বাবদ নবাব সলিমুল্লাহ তার নিজস্ব তহবিল থেকে অনুদান দিয়েছিলেন ছয় লাখ টাকা। ১৯০৬ সালের ছয় লাখ টাকার মূল্যমান আজকে কত হতে পারে, আপনারা সহজেই অনুমান করে নিতে পারেন! বঙ্গভঙ্গের ফলে স্থাপিত নতুন প্রদেশে শান্তিশৃঙ্খলা রক্ষার জন্য ১৯০৯ সালের ২১ মার্চ, হিন্দু-মুসলমান নেতাদের একত্র করে তিনি ‘ইম্পেরিয়াল লিগ অব ইস্ট বেঙ্গল অ্যান্ড আসাম’ নামে একটি শক্তিশালী সামাজিক সংস্থা প্রতিষ্ঠা করেন। নতুন প্রদেশে পূর্ব বাংলার সাধারণ মুসলমান জনগণের ক্ষমতায়নের ফলে জোতদার, জমিদার, মহাজন ও কলকাতাবাসী ডাক্তার, উকিল, মোক্তারসহ আত্মস্বার্থকেন্দ্রিক পেশাজীবীদের স্বার্থে দারুণ আঘাত লাগে। তারা সবাই ক্ষমতাশালী এলিট শ্রেণীর লোক ছিলেন। তারা বঙ্গভঙ্গকে মেনে নিতে পারেননি। তাদের প্ররোচনায় বঙ্গভঙ্গের বিরুদ্ধে প্রদেশজুড়ে সন্ত্রাসী আন্দোলন শুরু হয়। সলিমুল্লাহকে শত্রু হিসেবে ঘোষণা দেয়া ছাড়াও তাকে কুমিল্লায় গুলি করে হত্যার চেষ্টা হয়। কুমিল্লা থেকে ঢাকা ফিরে আসার পথে তার ট্রেন লাইনচ্যুত করা হয় তাকে হত্যার দ্বিতীয় প্রচেষ্টা হিসেবে। ভাগ্যক্রমে তিনি বেঁচে যান। পূর্ব বাংলার মুসলমানদের স্বার্থবিরোধী গোষ্ঠী বঙ্গভঙ্গ বাতিলের উদ্দেশ্যে প্রচণ্ড অন্দোলন গড়ে তোলে। এতে প্রথমপর্যায়ে রবীন্দ্রনাথও যোগ দিয়েছিলেন। সন্ত্রাসী আন্দোলনে ভীতসন্ত্রস্ত হয়ে ব্রিটিশরাজ বঙ্গভঙ্গ রহিত করার সিদ্ধান্ত নেয় এবং ১৯১১ সালের ডিসেম্বরে রাজা পঞ্চম জর্জ দিল্লির দরবার হলে এই মর্মে ঘোষণা দেন। এই ঘোষণা কার্যকর হয় ১৯১২ সালের ১ এপ্রিল। একই সময়ে ব্রিটিশ-ভারতের রাজধানী কলকাতা থেকে দিল্লিতে নিয়ে যাওয়া হয়। বঙ্গভঙ্গ রদের ফলে সলিমুল্লাহ দারুণভাবে আশাহত এবং ব্রিটিশদের ওপর ভীষণ ক্ষুব্ধ ও অসন্তুষ্ট হন। প্রতিবাদে তিনি ব্রিটিশরাজের দেয়া জিসিআইই ব্যাজ ছুড়ে ফেলে দেন এবং অবিলম্বে পূর্ব বাংলার অবহেলিত জনগণের স্বার্থ রক্ষার জন্য আট দফা দাবি রাজা পঞ্চম জর্জের কাছে পেশ করেন। এসব দাবির মধ্যে ছিল ঢাকায় একটি বিশ্ববিদ্যালয়, হাইকোর্ট এবং কেন্দ্রীয় সরকারের একজন শিক্ষা অফিসারের পদায়ন। হাইকোর্ট ও বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য তিনি রমনায় প্রয়োজনীয় জমিদানের প্রতিশ্রুতি দিলেন। তার মৃত্যুর পর, টাঙ্গাইলের জমিদার নবাব সৈয়দ নওয়াব আলী চৌধুরীসহ কয়েকজন বিদ্যোৎসাহী ব্যক্তির উদ্যোগে ঢাকায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠিত হয়। এখানে বলে রাখা প্রয়োজন, বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্ট, প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস স্থাপিত হয়েছে যে জমির ওপর, তা ঢাকার নবাব পরিবারেরই বদান্যতায় পাওয়া। নবাব সলিমুল্লাহর কাছ থেকে পূর্ব বাংলার গরিব মুসলমানদের আরো অনেক কিছু পাওয়ার ছিল, কিন্তু দুর্ভাগ্যের বিষয়, কিছু দিনের মধ্যেই অর্থাৎ ১৯১৫ সালের ১৬ জানুয়ারি তার কলকাতার বাড়িতে তাকে মৃত পাওয়া যায়। তখন তার বয়স হয়েছিল মাত্র ৪৪ বছর। যারা মৃতদেহের বিবর্ণ চেহারা ও মুখের বিকৃতি দেখেছেন, তাদের কাছে মনে হয়েছে, নবাব সলিমুল্লাহকে বিষ দিয়ে হত্যা করা হয়েছে। তার লাশ রাষ্ট্রীয় মর্যাদায় সিলগালা করা কফিনে ব্রিটিশ সৈন্যদের কড়া পাহারায় নদীপথে ঢাকায় আনা হয় এবং বেগমবাজারে পারিবারিক গোরস্থানে দাফন করা হয়। সড়কপথে কিংবা রেলযোগে তার লাশ ঢাকায় আনার ব্যাপারে ব্রিটিশরাজ সাহস পায়নি। হয়তো তাদের ভয় ছিল শোকাহত ও ক্ষুব্ধ জনগণ পথিমধ্যে কফিন ভেঙে মৃত নবাবের বিকৃত চেহারা দেখে ফেলতে পারেন! লাশ যখন ঢাকার সদরঘাটে আসে, তখন হাজার হাজার মানুষ শেষবারের মতো তাদের প্রিয় নবাবের মুখ দেখতে চেয়েছিলেন। কিন্তু ব্রিটিশ সৈন্যরা কাউকেই লাশের চেহারা দেখতে দেয়নি। এমনকি তার স্ত্রী-সন্তান ও স্বজনেরাও শেষবারের মতো মুখ দেখতে পারেননি। দাফনের পর ব্রিটিশ সৈন্যরা আহসান মঞ্জিল এবং স্যার সলিমুল্লাহর কবরের চার পাশ দিনরাত ২৪ ঘণ্টা ঘেরাও করে রেখেছিল ছয় মাস। আসলে অনেকের ধারণা, স্যার সলিমুল্লাহকে হত্যা করা হয়েছিল এবং এ ষড়যন্ত্রের সাথে বঙ্গভঙ্গ আন্দোলনের বিরোধী শক্তি ও ব্রিটিশরাজের যুক্ত থাকা অসম্ভব নয়। কারণ বঙ্গভঙ্গ রহিত হওয়ার পর সরকারের বিরুদ্ধে সলিমুল্লাহ অনেক কড়া কড়া বক্তৃতা-বিবৃতি দিয়েছিলেন। নতুন প্রজন্মের অবশ্যই জানা উচিত, পূর্ব বাংলার অনগ্রসর জনগোষ্ঠীকে জাগানোর জন্য সলিমুল্লাহ যে আজান দিয়ে গেছেন, তার প্রতিধ্বনি এখনো আকাশে-বাতাসে মিশে আছে। সলিমুল্লাহর জন্ম না হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠা হয়তো আরো পিছিয়ে যেত এবং পূর্ব বাংলার অনগ্রসর মুসলমানেরা উচ্চশিক্ষার সুযোগ থেকে ব্যাপকভাবে বঞ্চিত থাকত। এ অবস্থায় দেশ স্বাধীন হলেও পূর্ব পাকিস্তানের সরকার ও প্রশাসন চালানোর মতো যোগ্য শিক্ষিত জনশক্তি পাওয়া দুষ্কর হতো। লেখক : অধ্যাপক, টেনেশি স্টেট ইউনিভার্সিটি; এডিটর, জার্নাল অব ডেভেলপিং এরিয়াজ E-mail: wahid2569@gmail.com উৎসঃ dailynayadiganta পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 12 Sep, 2016 স্যার সলিমুল্লাহ্ : কী করে ভুলি তাঁকে! 26 Aug, 2016 ওদের জীবন এমন কেন? 06 Aug, 2016 ‘মানুষ কেন মানুষ মারে?’ 03 Jul, 2016 ঈদ আনন্দের সেকাল একাল 27 Jun, 2016 পিঁপড়ার শিক্ষা 17 Jun, 2016 ‘ভালোর ভয়’ ও আগামী দিনের বাংলাদেশ! 10 Jun, 2016 ‘আরেকবার সাধিলেই খাইব’ 03 May, 2016 ভার্টিক্যাল ভিলেজ ও বাংলাদেশ 15 Mar, 2016 তেলের বাজারে তেলেসমাতি 20 Feb, 2016 ‘বাঙালি, আমাকে বাঁচাও’ 02 Feb, 2016 একটা প্রশ্ন ও তার আংশিক উত্তরীি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 June 2016, Saturday বদরুদ্দীন উমর সম্প্রতি বেশ কয়েকটি লেখায় বাংলাদেশে হিন্দু প্রশ্ন ও সাম্প্রদায়িকতার প্রসঙ্গ তুলেছেন। তার দুটো লেখা গুরুত্বপূর্ণ। ‘এটা কি সাম্প্রদায়িকতা?’, লিখেছেন ২৫ মে ২০১৪ সালে, যুগান্তরে; দ্বিতীয় লেখাটি হচ্ছে, ‘বাংলাদেশে প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা?’। এটিও ছাপা হয়েছে যুগান্তরে সম্প্রতি, ৫ জুন ২০১৬ তারিখে। দেখলাম তার এই লেখাগুলো বাম বলে পরিচিত অনেকে পছন্দ করেনি। যাদের মধ্যে তার পুরনো অনুসারী, এমনকি এখনকার অনুরাগীরাও রয়েছে। অথচ যে দুটো প্রশ্ন বদরুদ্দীন উমর তুলেছেন তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কাকে আমরা সাম্প্রদায়িকতা বলব? কীভাবে সেটা নির্ধারিত হবে? দ্বিতীয় প্রশ্ন, যদি আমরা সংখ্যালঘু নিয়ে কথা বলতে চাই তাহলে প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা? কেন আমরা ক্ষুদ্র জাতিসত্তাগুলোর অস্তিত্ব ভুলে যাচ্ছি? প্রকৃত সংখ্যালঘু নির্ণয়ের পদ্ধতিও বা কীভাবে ঠিক হবে? বাংলাদেশে হিন্দুদের ওপর সাম্প্রতিককালে নির্যাতন বেড়েছে, উমর তা অকপটে স্বীকার করেন। কিন্তু তাকে তিনি সাম্প্রদায়িকতা দিয়ে ব্যাখ্যা করতে রাজি নন। কীভাবে ব্যাখ্যা করা যেতে পারে সে বিষয়ে বিভিন্ন সময় ফ্যাসিবাদ ও ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থা এবং এখন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের ভূমিকা সম্পর্কে তার লেখালিখি থেকে বুঝে নিতে হবে। শুধু এই দুটি লেখা থেকে বোঝা যাবে না। তাছাড়া বদরুদ্দীন উমর ভালোই জানেন যে, এখন আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের জনগণকে খেয়ে না খেয়ে ‘সাম্প্রদায়িক’ প্রমাণ করার পেছনে খুবই সুনির্দিষ্ট ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত রাজনীতি কাজ করে। বাংলাদেশের ভূ-রাজনৈতিক অবস্থানের কারণে তা ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনতে পারে। ফলে বাংলাদেশের হিন্দু প্রশ্ন মীমাংসার ক্ষেত্রে তিনি আমাদের চিন্তার অভিমুখ পদ্ধতিগতভাবে বদলানোর প্রস্তাব করছেন। এই প্রস্তাব খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আশা করি তার লেখা নিয়ে তর্ক আন্তরিক ও ইতিবাচক দিকেই আমাদের নেবে। তার লেখা পড়ে বামদের মতো আমাদের ভিরমি খাবার এবং তাকে অন্যায়ভাবে সমালোচনা করার কোনো দরকার নাই। বাংলাদেশের যেসব বাম তাকে অন্যায়ভাবে সমালোচনা করছে, তাদের মূল সমস্যা হচ্ছে চরম হীনমন্যতা ও বুদ্ধিবৃত্তিক অসততা। এদের ধারণা, দেশকে সাম্প্রদায়িক প্রমাণ করতে না পারলে বুঝি বাংলাদেশের নাগরিক হিসেবে হিন্দু বা হিন্দু সম্প্রদায়ের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের আর কোনো ব্যাখ্যা দেয়া যাবে না। বাংলাদেশের সমাজকে দোষী সাব্যস্ত করে আন্তর্জাতিক কাঠগড়ায় না তুলে তারা স্বস্তি পায় না। হিন্দু যে কারণেই নির্যাতিত হোক তাকে সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের হাতে সংখ্যালঘু হিন্দুর অত্যাচার-নির্যাতন হিসেবে ব্যাখ্যা করতেই হবে। এই এক বিচিত্র ও বিকৃত মানসিকতা। স্বীকার না করলে বুঝি হিন্দুর ওপর নির্যাতন অস্বীকার করা হয়! মোটেও তা নয়। বাংলাদেশ সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমানের দেশ। বামদের হীনমন্যতার কারণে তারা মনে করে বাংলাদেশে ‘সাম্প্রদায়িকতার সামাজিক ভিত্তি নাই’ বলা মানে এ দেশে সংখ্যালঘু হিন্দুদের অকূল সাগরে ভাসিয়ে দেয়া, তাদের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের প্রতিবাদ ও প্রতিরোধ বাদ দেয়া। এখানেই বুদ্ধিবৃত্তির চরম অসততা ও দীর্ঘদিনের চিন্তার আবর্জনা সজ্ঞানে বা অজ্ঞানে বামেরা বয়ে বেড়ায়। অথচ দুটো লেখারই প্রধান একটি উদ্দেশ্য হচ্ছে, অত্যাচার-নির্যাতন, মন্দির ভাঙা, জমি-সম্পত্তি দখল করে নেয়া ইত্যাকার দুর্বৃত্তপনা ও লুণ্ঠনবাজি আমরা রুখব কী করে? উমর বলছেন, উগ্র বাঙালি জাতীয়তাবাদের কারণে ‘হিন্দুরা বাংলাদেশীদেরই অংশ। হিন্দুরা ধর্মীয়ভাবে সংখ্যালঘু হলেও জাতিগতভাবে সংখ্যাগুরু। কাজেই যে বাঙালিরা বাংলাদেশে শাসনক্ষমতায় রয়েছে তাদের মধ্যে বাঙালি হিন্দুরাও আছে। এটা মনে রাখা দরকার, বাংলাদেশে মুসলমানদের শাসন বলে যদি কিছু থাকে তার থেকেও গুরুত্বপূর্ণ হল বাঙালিদের শাসন।’ শাসন ক্ষমতার চরিত্র বিচার করলে বাংলাদেশে মুসলমানরা শাসক নয়, বাঙালিরাই শাসক আর হিন্দুরা শাসক শ্রেণীর অংশ। ‘এদিক দিয়ে আওয়ামী লীগ, বিএনপি, জাতীয় পার্টির মধ্যে কোনো পার্থক্য নেই। বাঙালিরা পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতি এবং সাঁওতাল, গারো, হাজং, রাখাইন ইত্যাদি জাতিগত সংখ্যালঘু ও উর্দুভাষী অবাঙালি সংখ্যালঘুদের ওপর নির্যাতনকারী। বাংলাদেশের সর্বত্র যে শোষণ-নির্যাতন চলে সে শোষণ-নির্যাতন ধর্ম নির্বিশেষে হিন্দু-মুসলমান বাঙালিরা একত্রেই করে থাকে।’ তাহলে জাতিবাদী বাঙালি শাসকদের অংশ হিন্দুরা স্রেফ ধর্মের পার্থক্যের কারণে বাংলাদেশে ‘প্রকৃত সংখ্যালঘু’ হতে পারে না। বাঙালি জাতির অংশ হিসেবে তার সম্প্রদায়গত অবস্থান বরং নিপীড়কের, নির্যাতিতের নয়। এদেশের আদিবাসী বা ক্ষুদ্র জাতিসত্তাই ‘প্রকৃত সংখ্যালঘু’। বদরুদ্দীন উমর যেভাবে সিদ্ধান্ত টেনেছেন তার পর্যালোচনা হতে পারে; কিন্তু সেক্ষেত্রে তার তোলা প্রশ্নের গভীরতার সঙ্গে পর্যালোচনার দূরদৃষ্টির সম্মিলন ঘটা জরুরি। উমর বলছেন, এই পরিস্থিতিতে ‘সাম্প্রদায়িকতার কারণ ও রাজনৈতিক চরিত্র বিষয়ে যারা অজ্ঞ, তারাই কোনো সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর যে কোনো ধরনের আক্রমণকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে থাকে। মতলববাজরা যে এ কাজ করে থাকে এটা সবারই জানা।’ তার লেখা মতলববাজদের বিরুদ্ধে। মতলববাজরা হচ্ছে ‘আওয়ামী ঘরানার কিছু বুদ্ধিজীবী’, সংবাদপত্র ও কিছু কিছু ব্যক্তির বক্তৃতা-বিবৃতি ও প্রচারণা। তিনি স্বীকার করেন, ‘হিন্দুসহ ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের ওপর আক্রমণ আগের থেকে বৃদ্ধি পেয়েছে।’ কিন্তু তার কারণ সাম্প্রদায়িকতা নয়। তার বক্তব্য হচ্ছে, সাম্প্রদায়িকতা কোনো হাওয়াই জিনিস নয়, তার ‘সুনির্দিষ্ট সামাজিক ভিত্তি’ থাকে। সেটা ব্রিটিশ ভারতে ছিল, পাকিস্তানের প্রথম দিকে থাকলেও তা ধীরে ধীরে অপসারিত হয়। ‘অসাম্প্রদায়িক রাজনীতি বিকশিত হয়ে বাংলাদেশ রাষ্ট্র সৃষ্টির মাধ্যমে তার সামাজিক ভিত্তি বিনষ্ট হয়।’ অসাম্প্রদায়িক রাজনৈতিক চর্চার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের আবির্ভাবে উমরের কাছে প্রতীয়মান হয় যে বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতার আর্থ-সামাজিক ভিত্তি নাই। সাম্প্রদায়িকতার কোনো আর্থিক ভিত্তি না থাকলে উমর তাকে সাম্প্রদায়িক বলতে নারাজ। যারা উমরের সমালোচনা করেছেন, তাদের কাছে এ জায়গাটি হচ্ছে সবচেয়ে আপত্তির জায়গা। উমরের বক্তব্য নাকচ করে দিয়ে তারা বলতে চান রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সাম্প্রদায়িকতা আছে। অতএব উমর ঠিক বলেননি। কিন্তু পুরো সমাজ নিয়ে উমর কথা বলছেন। হিন্দুর ওপর অত্যাচার-নির্যাতন কিংবা হিন্দুর জমি দখল ইত্যাদি বাংলাদেশের সমাজ আদৌ সঠিক গণ্য বা বরদাশত করে কি? তাহলে একে অন্যের জমি লুণ্ঠনকারী বা ভূমিদস্যুদের কাজ না বলে এবং তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ তৈরি না করে সাম্প্রদায়িক নির্যাতন বলছি কেন? দুর্বৃত্ত ও ভূমিদস্যুদের বিরোধিতা না করে কেন তার ওপর সাম্প্রদায়িকতার রঙ চড়ানো? হাওয়ায় তলোয়ার ঘুরানো কেন, সেটাই হচ্ছে প্রশ্ন। তদুপরি মূল ইস্যু ও বাস্তব সমস্যা থেকে দৃষ্টি সরিয়ে নেয়ার জন্য জামায়াতে ইসলামী, বিএনপি এবং বাঙালি জাতীয়তাবাদীদের রাজনীতির যারা বিরোধী, তাদের দোষারোপ করাই বা কেন? এদের সঙ্গে প্রতিক্রিয়াশীলতার লড়াইয়ের চরিত্র ভিন্ন। জামায়াতে ইসলামীকে হিন্দুর বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করতে দেখা যায়নি, শুরু থেকেই তাদের আক্রমণের লক্ষ্য গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও সমাজতান্ত্রিক শক্তি। জামায়াতের আক্রমণের যারা মূল লক্ষ্যবস্তু তাদের বিপুল ও অধিকাংশ মানুষই মুসলমান পরিবারের সদস্য। হিন্দু না। কিন্তু তারা ইসলামী শাসন এবং ইসলামী আইন প্রবর্তন ও কার্যকর করার বিরোধী। তাহলে হিন্দু নির্যাতনের অপরাধ জামায়াতে ইসলামীর ওপর চাপিয়ে দেয়া মূলত গণতান্ত্রিক, প্রগতিশীল ও সমাজতান্ত্রিক শক্তির বাস্তব লড়াইয়ের চরিত্র অস্বীকার করা। লক্ষ্য করেছি, যারা উমরের সমালোচনা করেছেন তারা এই গুরুত্বপূর্ণ জায়গাটি এড়িয়ে গিয়েছেন। এখানেও বামদের বুদ্ধিবৃত্তিক অসততা ধরা পড়ে। প্রশ্ন হচ্ছে, হিন্দুসহ অন্য ধর্মাবলম্বীদের বাংলাদেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মুসলমান তাদের সমাজের অন্তর্গত মনে করে কি? নাকি তাদের দুশমন গণ্য করে। দুশমনির মাত্রা কতটুকু হলে পুরো সমাজকে আমরা সাম্প্রদায়িক বলে চিহ্নিত করতে পারি? বিশ্বজিতকে যখন ছাত্রলীগ ও যুবলীগের খুনিরা প্রকাশ্যে কুপিয়ে হত্যা করল, তাকে কীভাবে বিচার করব? বিশ্বজিৎ বারবার বলেছিল, আমি হিন্দু; তারপরও তাকে হত্যা করা হয়েছে। তাহলে কি আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গসংগঠন একটি সাম্প্রদায়িক দল? হিন্দুরা সম্প্রদায় হিসেবে বিশেষভাবে নির্যাতিত হচ্ছে সেটাও ভুল। উমর বলছেন, ‘দেশে সাধারণভাবে যে নৈরাজ্য এবং আইনশৃংখলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটেছে, তাতে সম্প্রদায় নির্বিশেষে মানুষকে নির্যাতন করা হচ্ছে, তাদের নিরাপত্তা বিপন্ন হচ্ছে, অনেকে আওয়ামী লীগ ও তাদের সরকারি লোকদের দ্বারা অপহৃত এবং নিহত হচ্ছেন। এদের মধ্যে মুসলমানদের সংখ্যাটি সব থেকে বেশি, কারণ দেশে ধর্মীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে তারাই বিপুল সংখ্যাগরিষ্ঠ। কিন্তু হিন্দুরা বাংলাদেশের জনসংখ্যার একটি অংশ, শতকরা নয়-দশ ভাগের মতো। কাজেই সাধারণভাবে দেশে সরকারি-বেসরকারি ক্রিমিনালদের দ্বারা মানুষের ওপর যে নির্যাতন হচ্ছে, তার দ্বারা জনগণের অংশ হিসেবে তারাও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তবে এটাও বলা দরকার যে, হিন্দুদের জনসংখ্যার তুলনায় এ সংখ্যা অল্প। কিন্তু এ ক্ষেত্রে যা লক্ষ করার বিষয় তা হচ্ছে, মুসলমানরা অনেক অধিক সংখ্যায় ক্ষতিগ্রস্ত, এমনকি নিহত হলেও কেউ বলে না যে, মুসলমানরা ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে বা সাম্প্রদায়িকভাবে মুসলমানদের ওপর আক্রমণ হচ্ছে। কিন্তু কোনো হিন্দু এভাবে নির্যাতনের শিকার হলেই কিছু লোক সমস্বরে বলতে থাকে, ‘হিন্দুদের’ ওপর নির্যাতন হচ্ছে!’’ সাধারণভাবে বাংলাদেশের জনগণ যেভাবে নিপীড়িত, গুম-খুন হচ্ছে তাকে ধামাচাপা দিয়ে হিন্দুর ওপর নির্যাতনের প্রচারকে উমর অশনিসংকেত হিসেবে দেখেছেন। উমরের লেখা থেকে যা বুঝেছি তা হল, তিনি কোনো পরিভাষা বা সংজ্ঞা ব্যবহারের আগে তাকে কোন অর্থে কী বিশ্লেষণের জন্য ব্যবহার করছেন সে বিষয়ে পরিচ্ছন্ন থাকতে চান। এর মূল কারণ হচ্ছে, বাংলাদেশকে সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে প্রমাণ করার আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিপদ সম্পর্কে তিনি সজ্ঞান ও সতর্ক। বাস্তবে সাধারণ মানুষের ওপর যে নির্যাতন ও হত্যাকাণ্ড চলছে এবং হিন্দুদের ওপর নির্যাতন, উভয়ই বাংলাদেশের সামগ্রিক পরিস্থিতির অবনতির সঙ্গে যুক্ত, আলাদা কিছু নয়। তুলনায় যারা তার সমালোচনা করেছেন তাদের কাছে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বাস্তবতা গৌণ। তাদের সমালোচনা উমরের কথাই প্রমাণ করে। তারা বাস্তবে কী ঘটছে তা বিচার না করে কোনো সম্প্রদায়ের লোকদের ওপর যে কোনো ধরনের আক্রমণকে সাম্প্রদায়িক আখ্যা দিয়ে থাকে। তারা ‘মতলববাজ’। দিল্লি ও আন্তর্জাতিক রাজনীতির উদ্দেশ্য বাস্তবায়নই তাদের লক্ষ্য। উমরের প্রশ্নের পরিপ্রেক্ষিত ও আঞ্চলিক আন্তর্জাতিক বাস্তবতা এড়িয়ে ‘সাম্প্রদায়িকতাকে শুধুমাত্র অর্থনৈতিক একটা তাৎপর্য দিয়েই ব্যাখ্যা করা যায় না’ বলে যারা উমরের সমালোচনা করছেন, তারা মতলববাজদের দলেই ভিড়লেন। তারা দাবি করছেন, ‘সাম্প্রদায়িকতা এখানে শক্তিশালীভাবেই দৃশ্যমান।’ কিন্তু সেটা বাস্তবে নাকি প্রচার প্রোপাগান্ডার ফলে, তাদের লেখা থেকে সেটা বোঝার কোনো উপায় নেই। এ ক্ষেত্রে তারা হিন্দুর সাম্প্রদায়িক পরিচয়ের দুর্বলতার কথা বলছেন। তাদের এ দাবির ভিত্তি দুর্বল। কারণ বাংলাদেশে ক্ষমতার চরিত্রে বাঙালি জাতি ও জাতীয়তাবাদের আধিপত্য এবং আঞ্চলিক পরাশক্তি হিসেবে হিন্দুত্ববাদী ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের হিন্দুর শক্তির সম্পর্ক বিচার করলে সম্প্রদায় হিসেবে, এমনকি ব্যক্তি হিসেবেও বাংলাদেশে হিন্দু শক্তিশালী ও শাসকশ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত। দুই তবে বদরুদ্দীন উমর পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের কালপর্বে বিভিন্ন ধর্মগোষ্ঠীর মধ্যে অর্থনৈতিক স্বার্থের প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতা থেকে তৈরি হওয়া বিভেদ, বিভাজন ও সামাজিক বিখণ্ডিভবন নিয়ে কিছু লিখেছেন বলে আমার চোখে পড়েনি। তার উত্থাপিত প্রশ্নের সঠিক বিবেচনার জন্য সেদিকটিও বিবেচনায় নেয়া জরুরি। হিন্দু, মুসলমান, বৌদ্ধ, খ্রিস্টান ইত্যাদি নিছকই ধর্ম বিশ্বাসজাত পরিচয় নয়। ধর্মীয় পরিচয়ের মধ্যে তাদের ঐতিহাসিক তাৎপর্য সীমাবদ্ধ নয়। যদিও ধর্মবিশ্বাসীরা ইতিহাস থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন গণ্য করে অনৈতিহাসিকভাবেই নিজেদের নিয়ে ভাবতে অভ্যস্ত। ইংরেজিতে একটা পরিভাষা আছে- নিজের আত্মপরিচয়কে ‘এসেনশিয়ালাইজ’ করা। অর্থাৎ ঐতিহাসিকভাবে আত্মপরিচয়ের উদ্ভব ও বিবর্তন বিচার না করে ধর্মীয় পরিচয়ের দ্বারা নির্ণিত পরিচয়কেই চিরায়ত, পূর্বনির্ধারিত ও স্বতঃসিদ্ধ সত্তা গণ্য করা। উপমহাদেশে বিভিন্ন ধর্ম এবং ধর্ম সম্প্রদায় থেকে সঞ্জাত পরিচয় সম্পর্কে আমরা এভাবেই ভাবতে অভ্যস্ত। অন্যদিকে সংখ্যাগুরু/সংখ্যালঘু বিভাজনও বিভ্রান্তি তৈরি করে। সামাজিক মানুষ ও তাদের সমাজকে নিছকই সংখ্যা দিয়ে বিবেচনার রীতি আধুনিক রাষ্ট্র এবং ভোটের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। ফলে প্রসঙ্গের বাইরে বিমূর্তভাবে ‘সংখ্যালঘু’ কথাটিরও অপব্যবহার ঘটে। আধুনিক রাষ্ট্রে ক্ষমতা তৈরি ও বৈধ করার প্রক্রিয়ার বিচার ছাড়া ‘সংখ্যালঘু’ বর্গটির যথেচ্ছ ব্যবহার প্রোপাগান্ডা ও প্রচারের কাজেই বেশি ব্যবহার করা হয়। ইতিহাসের খবর নেয়া বেশ পরিশ্রমের কাজ বটে। সেই খবর নিতে হলে প্রাচীন আর্য বনাম অনার্যের দ্বন্দ্ব, রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ ও অনার্যদের পরাজয়, বর্ণাশ্রম প্রথাভিত্তিক আর্থ-সামাজিক ব্যবস্থা কায়েম এবং তার বিরুদ্ধে হাজার বছরের নিু জাতের মানুষের লড়াই, ঔপনিবেশিক শাসন পদ্ধতির মধ্যে হিন্দু-মুসলমান ভেদ নীতি, উপমহাদেশে মুসলমানদের আগমন, সাম্রাজ্য ও সুলতানি প্রতিষ্ঠা, চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মধ্য দিয়ে জমিতে বিশেষ চরিত্রের ব্যক্তিগত সম্পত্তি কায়েম এবং তার ওপর হিন্দু জমিদার এবং মহাজন শ্রেণী গঠন, ঔপনিবেশিক কলকাতা ও বাংলার নবজাগরণ নামক বর্ণহিন্দুর ভাষা, সংস্কৃতি ও ধ্যান-ধারণার আধিপত্য, বাংলা ভাগের ইতিহাস এবং কংগ্রেস ও মুসলিম লীগের রাজনীতি- ইত্যাদি নানান বিষয় নিয়ে গবেষণা ও ভাবনাচিন্তার দরকার আছে। ফলে হিন্দু নিজেকে শাশ্বত কাল থেকেই হিন্দু মনে করে। মুসলমান নিজেকে বাবা আদমের সময় থেকেই মুসলমানভাবে। উপমহাদেশে তার সুনির্দিষ্ট ইতিহাস জানতে সে বিশেষ আগ্রহী নয়। এমনকি হিন্দু কীভাবে নিজেকে অন্য সম্প্রদায়, বিশেষত মুসলমানের বিপরীতে নিজের পরিচয় নির্ণয় বা নির্মাণ করে সে বিষয়েও হিন্দু সচেতন নয়। তেমনি মুসলমানও নয়। মুসলমান যা কিছুকে পৌত্তলিকতা কিংবা তার ধর্মের বিপরীত চর্চা হিসেবে দেখে, তার বিপরীতেই নিজেকে মুসলমান হিসেবে উপলব্ধি করে। কিন্তু নির্মাণ করে বলেই তারা সাম্প্রদায়িক হয়ে যায় না। পরস্পরের মধ্যে পার্থক্য ও বৈচিত্র্য নানা ধরনের দ্বন্দ্ব তৈরি করতেই পারে। সেই দ্বন্দ্বের সুনির্দিষ্ট চরিত্র বিশ্লেষণ করা ও বোঝা দরকার। উমর বলছেন, ‘হিন্দুদের ওপর আক্রমণ করে তাদের বাড়িঘর থেকে উচ্ছেদ করার যে চেষ্টা বিভিন্ন জায়গায় এখন দেখা যাচ্ছে, তার সঙ্গে সাম্প্রদায়িকতার কোনো সম্পর্ক নেই। এ আক্রমণকে দেশে বিরাজমান লুটপাট, ভূমিদস্যুতা এবং অপরাধপ্রবণতা বৃদ্ধির পরিপ্রেক্ষিতেই বিচার করতে হবে।’ একে তিনি সবার মতোই অবশ্যই সমস্যা হিসেবে দেখছেন। কোনো ফারাক নাই। কিন্তু অন্যদের সঙ্গে তার দেখার ফারাক হল, তিনি এটাকে আদৌ হিন্দু সম্প্রদায়ের সাম্প্রদায়িকতার সমস্যা হিসেবে দেখছেন না। তার ক্যাটাগরি খেয়াল করতে হবে। হিন্দুদের ওপর হামলা নির্যাতন মানেই তা সাম্প্রদায়িক নয়। মুসলমান ও অন্যান্য ধর্মসহ হিন্দুদের ওপর আক্রমণকে তিনি সাম্প্রদায়িক বলে মানতে রাজি নন। পরিষ্কার বলছেন। ‘এক্ষেত্রে এটা অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে, এ ধরনের আক্রমণ শুধু হিন্দুদের ওপরই হচ্ছে না, এটা আরও বড় আকারে হচ্ছে মুসলমানদের ওপর, যার রিপোর্ট প্রতিদিনই সংবাদপত্রের পাতায় দেখা যায়। হিন্দুরা বাংলাদেশের সমগ্র জনসংখ্যার একটি অংশ। কাজেই দেশজুড়ে ব্যাপকভাবে জনগণের ওপর যে আক্রমণ হচ্ছে, তার অংশ হিসেবে হিন্দুদের ওপরও আক্রমণ হচ্ছে।’ তাছাড়া আক্রমণ শুধু হিন্দুদের ওপরই হচ্ছে না। আরও অনেক বেশি করে হচ্ছে বিভিন্ন সংখ্যালঘু জাতিসত্তার লোকজনের ওপর। ‘উত্তর বাংলার সাঁওতালদের ওপর এই আক্রমণ হচ্ছে। এছাড়া রাখাইন, গারোসহ পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন জাতিসত্তার লোকদের ওপরও এটা হচ্ছে।’ একে মোকাবেলার জন্য বদরুদ্দীন উমর জনগণকে নিয়ে ‘প্রকৃত প্রতিরোধ’ গড়ে তুলতে চান। ভূমিদস্যু, লুটপাটকারী দুর্বৃত্তদের কথা না বলে পুরো সমাজকে সাম্প্রদায়িকতার দোষে অভিযুক্ত করা ও কুৎসা রটনার মধ্যে উমর ভয়ানক বিপদ দেখেন। তখন এ হামলার বিরুদ্ধে কোনো প্রকৃত গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলাও সম্ভব হবে না। তার প্রস্তাব : ‘প্রতিরোধ গড়ে তুলতে হবে অসাম্প্রদায়িক জনগণের বিরুদ্ধে নয়, এটা করতে হবে ভূমিদস্যু ও লুটপাটকারীদের বিরুদ্ধে।’ একজন সক্রিয় রাজনৈতিক কর্মী হিসেবে উমর খুবই দরকারি কাজের কথা বলছেন, কোনো বিমূর্ত তত্ত্ব নয়। এখানেই তার সঙ্গে অন্য বামদের পার্থক্য। সাম্প্রদায়িকতা সম্পর্কে তার যে সংজ্ঞা ও বিবেচনা, তা সুনির্দিষ্টভাবে ভূমিদস্যু ও লুণ্ঠনকারী দুর্বৃত্তদের বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক। এ ক্ষেত্রে তাকে সমর্থনই সঠিক ও কর্তব্য। তিন বদরুদ্দীন উমর হঠাৎ এ প্রশ্ন তোলেননি। বাংলাদেশকে কাঁটাতার দিয়ে ঘিরে রেখে ক্রমাগত সীমান্তে হত্যাকাণ্ড চালিয়ে দিল্লি ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তকে দুনিয়ার সবচেয়ে রক্তাক্ত সীমান্তে পরিণত করেছে। দিল্লিকে চিনতে আমাদের আর অসুবিধা হওয়ার কথা নয়। দিল্লির আগ্রাসনের চরিত্র উপমহাদেশের রাজনীতি ও ভবিষ্যৎ গতিপ্রকৃতি নির্ণয়ের গুরুত্বপূর্ণ দিক। এই আগ্রাসন, বলা বাহুল্য, নিত্য নিত্যই বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির দ্বন্দ্ব-সংঘাতের সুযোগ নেয়, নিচ্ছে ও নেবে। সেক্ষেত্রে হিন্দু নির্যাতন, সাম্প্রদায়িকতা, মন্দির-মঠ ভাঙা ইত্যাদি আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক প্রচারের মুখ্য বিষয় হয়ে ওঠে। দুনিয়াব্যাপী ইসলামভীতি ও ইসলামবিদ্বেষের কারণে বাংলাদেশকে একটি সাম্প্রদায়িক দেশ হিসেবে প্রমাণ করা সহজ হয়ে ওঠে। আইএসের নামে কুপিয়ে হত্যাকেও কেবল হিন্দুদের ওপর আক্রমণ বা সাম্প্রদায়িক সমস্যা হিসেবে দেখানোর চেষ্টা চলছে। এসব উদ্দেশ্যমূলক। এসবের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের রাজনীতি নতুন মাত্রা পাচ্ছে এবং নতুন পর্বে প্রবেশ করেছে। সেসব নজর করা দরকার। অন্যদের সঙ্গে হিন্দুদের ওপরও হামলাকে ‘সাম্প্রদায়িক’ না বলতে পারলে হীনমন্যতার কিছু নাই। হিন্দুদের ওপর হামলা মানেই সাম্প্রদায়িক হামলা নয়। সাম্প্রদায়িক না বললে সমস্যা বা সংকট মোকাবেলা করা যাবে না তাও নয়। বরং আসলে কারা এসব হত্যাকাণ্ডে জড়িত তাদের আড়াল করা হচ্ছে। দিল্লির আগ্রাসনের অজুহাত ও ভিত্তিকেই বরং মজবুত করা হচ্ছে। দিল্লিতে হিন্দুত্ববাদী ক্ষমতার অধিষ্ঠান সাময়িক নয়, ফলে ভারতে শক্তিশালী হিন্দুত্ববাদী ক্ষমতার আগ্রাসন কমবে না। বাড়বে। ভারতে হিন্দুত্ববাদের অধিষ্ঠানকে যারা সাময়িক ভাবেন, তারা গোলকায়নের সঙ্গে হিন্দুত্ববাদের ঐতিহাসিক ও অনিবার্য মৈত্রীকে আড়াল করেন। আধুনিক রাষ্ট্র ও রাজনীতির অনুষঙ্গে সিপিএম বা কংগ্রেস মার্কা রাজনীতির পোশাক আধুনিক ভারতে হিন্দুত্ববাদকে আড়াল করে রাখতে পেরেছিল। পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের এই যুগে নব্য হিন্দুত্ববাদের সেটা আর লুকিয়ে রাখার দরকার নাই। ভারতের সমাজ, সংস্কৃতি ও রাজনীতির এই গুণগত রূপান্তরের আলোকে বাংলাদেশের হিন্দু প্রশ্নের মীমাংসা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হয়ে উঠেছে। আসলে ‘প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা?’ -এ লেখায় বদরুদ্দীন উমর ঠিক এ আশংকা ব্যক্ত করেই তার লেখা শুরু করেছেন। তিনি বলছেন, ‘বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক পরিস্থিতি সৃষ্টি হওয়া ভারতের ক্ষমতাসীন দল বিজেপি ও তাদের পিতৃসংগঠন রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের (আরএসএস) জন্য খুব বেশি দরকার। চরমপন্থী সাম্প্রদায়িক দল হিসেবে ভারতে নিজেদের অবস্থান শক্তিশালী রাখার জন্যই এটা তাদের দরকার। কাজেই বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িকতা বলতে যা বোঝায় সেটা না থাকলেও সেই পরিস্থিতি তৈরির জন্য বিজেপি বেশ পরিকল্পিতভাবেই চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।’ বাংলাদেশে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা-হাঙ্গামায় বাংলাদেশ ও ভারতের হিন্দুত্ববাদী শক্তি তৎপর। এই বিপদ মোকাবেলা শুধু মুখে নিজেকে অসাম্প্রদায়িক দাবি করার মধ্যে কুলাবে না। বাংলাদেশে হিন্দু প্রশ্ন মীমাংসার সঙ্গে কীভাবে পুঁজিতান্ত্রিক গোলকায়নের মধ্যে পরিগঠিত উপমহাদেশের নব্য হিন্দুত্ববাদ ও আঞ্চলিক সাম্রাজ্যবাদী উপশক্তি হিসেবে দিল্লির উত্থান ও রক্তাক্ত আগ্রাসনের প্রশ্ন জড়িত তার বিবেচনা ও মীমাংসা এ কারণেই জরুরি। সে কারণে সাম্প্রদায়িকতা মানে কী, প্রকৃত সংখ্যালঘু কারা এসব প্রশ্ন স্বচ্ছ ও পরিচ্ছন্নভাবে তুলে বদরুদ্দীন উমর বাস্তবোচিত ও অগ্রসর চিন্তার নজির রাখলেন। তার লেখার আন্তরিক ও ঘনিষ্ঠ পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে আমরা বাংলাদেশে হিন্দু প্রশ্নের মীমাংসাকে আরেকটি গুণগত পর্যালোচনা স্তরে উন্নীত করতে পারি। কিন্তু যেসব বামপন্থী, এমনকি যারা এককালে তার অনুসারী ছিল, তারা তার লেখার প্রতিক্রিয়া জ্ঞাপন করতে গিয়ে প্রতিক্রিয়াশীল সমালোচনার অধিক কিছু করতে সক্ষম হয়নি। নদীতে বাঁধ দিয়ে ও পানি সরিয়ে বাংলাদেশকে শুকিয়ে মারার নীতি, ইসলামী জঙ্গি মোকাবেলার নামে দিল্লি ও পাশ্চাত্য শক্তি যেভাবে ক্ষমতাসীনদের দ্বারা বাংলাদেশে একটি যুদ্ধ পরিস্থিতি তৈরি করতে চায় তার কুফল পুরো উপমহাদেশে ছড়াবে। বাংলাদেশের হিন্দু, বৌদ্ধ ও খ্রিস্টানদের সেই যুদ্ধের উপাদান ও দাহ্য পদার্থ হিসেবে ব্যবহারের পরিণতি শুভ হতে পারে না। অনিবার্য পরিণতি হিসেবে চিরতরে বাংলাদেশের জনগণকে দিল্লির পদানত রাখার পরিকল্পনা কাজ করবে বলা যায় না; কিন্তু উপমহাদেশকে প্রবল অস্থিতিশীলতার দিকেই দিল্লি ঠেলে দিচ্ছে বলেই প্রতীয়মান হয়। ভারতে নিশ্চয়ই দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মানুষের অভাব নাই। তারা আশা করি এসব বিষয়ে ভাববেন। বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশের সচেতন ও সজ্ঞান মানুষদের অবিলম্বে সচেতন হয়ে ওঠা জরুরি। এসব বাস্তবতা শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো উপমহাদেশের জন্যই ভয়ংকর বিপদ তৈরি করেছে। মধ্যপ্রাচ্যের সহিংসতা, যুদ্ধবিগ্রহের ধারাবাহিকতায় বাংলাদেশে বিপদ ত্বরান্বিত করার জন্য দিল্লি ও বিজেপির তৎপরতা কতটুকু, সে প্রশ্ন উহ্য রেখেই বলতে হয়, তার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলার তাগিদ থেকেই বদরুদ্দীন উমর প্রশ্নগুলো তুলেছেন। এখানেই তার লেখার গুরুত্ব।যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:স্বাধীনতার পর ৪৪ বছরে ২২ হাজার কিমি নৌপথ বিলুপ্ত Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ স্বাধীনতার পর ৪৪ বছরে ২২ হাজার কিমি নৌপথ বিলুপ্ত 25 Sep, 2016 আজ রবিবার বিশ্ব নদী দিবস। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শিল্প বর্জ্যরে দূষণ, নদীর অবৈধ দখল, অতিরিক্ত পলি জমে ভরাট হয়ে আজ দেশের অধিকাংশ নদ-নদী হুমকির মুখে পড়েছে। নদীমাতৃক বাংলাদেশে নদ-নদীর ভবিষ্যত নিয়ে তৈরি হয়েছে গভীর শঙ্কা। উজানে সীমান্তের ওপারে বাঁধ তৈরি করে এক তরফা পানি সরিয়ে নেয়ার ফলে নদীগুলোতে দেখা দিয়েছে নাব্য সঙ্কট। প্রতিবছর নদীগুলো বাংলাদেশের ওপর দিয়ে ১.২ বিলিয়ন টন পলি বহন করে নিয়ে যায়। এই অতিরিক্ত পলি জমে নদীগুলো ভরাট হয়ে যাচ্ছে। ঢাকার চার নদীসহ শহরের বুক দিয়ে বয়ে চলা অধিকাংশ নদ-নদী শিল্প বর্জ্যরে দূষণে নদীর প্রাণ বৈচিত্র্য হুমকির মুখে পড়েছে। নদীর বুকেই চলছে অবৈধ দখলও। বাংলাদেশে নদ-নদীর প্রকৃত সংখ্যা কত তা নিয়ে সরকারী বিভিন্ন সংস্থার হিসাবের মধ্যে গড়মিল রয়েছে। তবে পানি উন্নয়ন বোর্ডের হিসাব মতে বাংলাদেশে শাখা প্রশাখা মিলিয়ে নদীর সংখ্যা ৩১০টি হবে। তবে নদী রক্ষায় গঠিত কমিশনের হিসাব মতে দেশে প্রধান নদ-নদীর সংখ্যা রয়েছে ৫৭টি। এর মধ্যে ৫৪টি নদী ভারত থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। বাকি ৩টি নদী মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। তবে নদনদীর প্রকৃত সংখ্যা যাই হোক না কেন গত ২শ’ বছরে দেশের নদনদীর গতি প্রকৃতি অনেক পরিবর্তন হয়েছে। এর মধ্যে আজ অনেক নদী মরা খালে পরিণত হয়েছে। অনেক নদীর অস্তিত্ব বিলীন হয়ে গেছে। অনেক নদী দখল ও দূষণের কারণে তার বৈচিত্র্য হারিয়ে ফেলেছে। দেশ স্বাধীনের পর বিআইডব্লিউটিআইয়ের পক্ষ থেকে যে জরিপ চালানো হয়েছিল তাতে বাংলাদেশে নৌপথের পরিমাণ ছিল ২৪ হাজার কিলোমিটার। অথচ সাম্প্রতিক বিভিন্ন জরিপে দেশের নৌপথের পরিমাণ দেখানো হচ্ছে মাত্র চার হাজার কিলোমিটার। তাও আবার শুষ্ক মৌসুমে এর পরিমাণ আরও নিচে নেমে আসছে। নদী পথ কমে যাওয়ার কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, প্রতিবছর দেশের ভেতর দিয়ে প্রবাহিত নদীগুলো ১.২ বিলিয়ন টন পলি বহন করছে। এই অতিরিক্ত পলি ভরাট হয়ে নদীর তলদেশ ভরাট হয়ে নাব্য সঙ্কট তৈরি করছে। ফলে বর্ষা মৌসুমে পানিতে পাড় উপচে সৃষ্টি করছে বন্যা। আবার একই কারণে শুষ্ক মৌসুমে এসব নদীতে নাব্য থাকে না বললেই চলে। পলি পড়ে ভরাট হওয়ার কারণে শুধু বর্ষা মৌসুম ছাড়া এসব নদীতে পানি থাকে না। পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ শনিবার এক অনুষ্ঠানে বলেন, নদী উদ্ধারের জন্য সরকার ড্রেজিংয়ের ওপর জোর দিচ্ছে। তিনি বলেন, সমস্যা হলো ড্রেজিং করা এত মাটি কোথায় ফেলা হবে। তিনি বলেন, বিভিন্ন এলাকায় পোল্ডার তৈরির আগে নদীর পানি বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ত। এ কারণে নদীর বয়ে আনা পলিও বিভিন্ন এলাকায় ছড়িয়ে পড়ত। এখন বন্যা নিয়ন্ত্রণের জন্য বিভিন্ন বাঁধের কারণে নদীর পানি বাইরে যেতে পারছে না। এ কারণে নদীর তলদেশে পলি পড়ে ভরাট হয়ে যাচ্ছে। এ কারণে সৃষ্টি হচ্ছে জলাবদ্ধতা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, স্বাধীনতার পর গত ৪৪ বছরে দেশে প্রায় ২২ হাজার কিলোমিটার নদীপথ বিলুপ্ত হয়ে গেছে। নামকাওয়াস্তে টিকে রয়েছে বড় বড় অনেক নদীপথ। আর ছোট ছোট বহু শাখা নদী এরই মধ্যে বিলুপ্ত হয়ে গেছে। আবার অনেকগুলো বিলুপ্তির পথে। তারা বলছেন, নদ-নদীর এই অপমৃত্যুর কারণে বাড়ছে নদী ভাঙ্গন, জলোচ্ছ্বাস, কমছে আবাদি জমি, বাড়ছে জলাবদ্ধতা। নদীভিত্তিক অর্থনীতি বিপর্যয়ের সম্মুখীন। এতে করে বাংলাদেশ বড় ধরনের ক্ষতির মুখে পড়ছে। বাড়ছে পরিবেশ বিপর্যয়। বাস্তুহারা ও অভিবাসী হচ্ছে লাখ লাখ মানুষ। সম্প্রতি জাতিসংঘের এক গবেষণা প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ুর ক্ষতিকর প্রভাবে আগামী ২৫ থেকে ৩০ বছরের মধ্যে উপকূলীয় ১২টি জেলার প্রায় দুই কোটি মানুষ অভিবাসী হয়ে যেতে পারে। পরিবেশ সংগঠন বাপার সাধারণ সম্পাদক ডাঃ আব্দুল মতিন বলেন, অবহেলা ও নিষ্ঠুরতায় নদীমার্তৃক বাংলাদেশের অনেক নদীই আজ প্রায় ইতিহাস। গত একশ’ বছরে মারা গেছে আমাদের অসংখ্য প্রিয় নদ-নদী। সংবাদপত্রের পাতা খুললেই প্রায় প্রতিদিন জানা যায় নদীর অনেক দুঃসংবাদ। একদিকে নদী দখলের চিত্র, অন্যদিকে প্রতিদিন শত শত টন শিল্প কারাখানার তরল রাসায়নিক বর্জ্য মিশে যাচ্ছে নদীর পানিতে, প্রতিনিয়ত নদীকে করছে দূষিত এবং জলজ বাসস্থানকে করছে বিপন্ন। এই ক্রমাগত দূষণ ও দখলে নদী আজ সঙ্কীর্ণ থেকে সঙ্কীর্ণতর। তিনি বলেন, দেশের প্রকৃতি, পরিবেশ, নদী-অর্থনীতি ও ভবিষ্যত উন্নয়নের স্বার্থে নদীর পাড় নদীকে অবশ্যই ফিরিয়ে দিতে হবে। দেশে দখল দূষণের শিকার হয়েছে কত নদ-নদী আর কতগুলো হুমকির মুখে রয়েছে তার সঠিক হিসাব না থাকলেও বিশেষজ্ঞরা বলছেন দেশের প্রধান কয়েকটি নদীর কথা বাদ দিলে অধিকাংশ নদীতেই শুষ্ক মৌসুমে পানি থাকে না। পর্যাপ্ত পানি প্রবাহ না থাকায় তাই বিলীন হওয়ার পথে দেশের এক তৃতীয়াংশ নদী। কাগজে কলমে দেশে ৩১০টি নদীর অস্তিত্ব থাকলেও তাদের হিসাব মতে প্রায় ১শ’ নদীতে বছরের বেশিরভাগ সময়ই পানি থাকে না। এর মধ্যে অনেক নদী ইতোমধ্যে বিলীন হয়ে কালের সাক্ষী হয়ে গেছে। গবেষণায় দেখা গেছে অনেক নদীতে বর্ষা মৌসুমে প্রবাহ কিছু থাকলেও শুষ্ক মৌসুমে নদী বলে মনে হয় না। বাকি সময়ে নদীতে চলে নানা ধরনের চাষাবাদ। সাম্প্রতিক সময়ে নদী ভাঙ্গন অন্যতম সমস্যায় পরিণত হয়েছে। প্রতিবছর হাজার হাজার মানুষ নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে উদ্বাস্তের মতো জীবন যাপন করছে। এসব নদী ভাঙ্গন শিকার হওয়ার ব্যক্তির সমাজে পুনর্বাসন করা সম্ভব হয় না। পানি সম্পদমন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ বলেন, প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার মানুষ নদী ভাঙ্গনের শিকার হয়ে উদ্বা¯ুÍতে পরিণত হচ্ছে। তিনি বলেন, এক সময় যার সহায় সম্পদ সব ছিল নদী ভাঙ্গনের কবলে পড়ে সে মুহূর্তের মধ্যে নিঃস্ব হয়ে পড়ছে। এ কারণে তার পক্ষে নতুন করে সমাজে খাপ খাওয়ানো সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের যে বরাদ্দ তা দিয়ে এই বিশাল পরিমাণ সমস্যার সমাধান করা সম্ভব হয় না। নদী ভাঙ্গন রোধের কাজ অনেক ব্যয়বহুল। নদীর এক মিটার ভাঙ্গন রোধে ১ লাখ টাকা দিতে হয়। ৫ কিলোমিটার ভাঙ্গন রোধে ব্যয় করতে হয় ৫০ থেকে ৭০ লাখ টাকা। তিনি বলেন, পানির ভেতরে কাজ এমনি জটিল যে শেষ না করে ফেলে রাখা যায় না। এক বছর অর্ধেক কাজ ফেলে রাখলে পরের বছর প্রথম থেকে শুরু করতে হয়। তিনি বলেন, ভাঙ্গনরোধ, বন্য নিয়ন্ত্রণ বাঁধ নির্মাণসহ সামান্য কাজেই ব্যয় করতে হয় কোটি কোটি টাকা। অথচ এসব কাজে মন্ত্রণালয়ের বরাদ্দ মাত্র ৭৫০ কোটি টাকা। নদীর এসব সমস্যার সঙ্গে যোগ হয়েছে নদী দূষণ ও দখলের মতো বড় একটি সমস্যা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, দূষণ ও দখলের কারণে ঢাকার চার নদীর অস্তিত্ব হুমকির মুখে। বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরের পাশ দিয়ে প্রবাহিত বুড়িগঙ্গা। চারশ’ বছর আগে এই নদী তীরেই গড়ে উঠেছিল ঢাকা শহর। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, একদিন যে নদীকে ঘিরে ঢাকা মহানগরী গড়ে উঠেছিল সেই নদী এখন মৃতপ্রায়। নদীর দুই কূল ঘেঁষে অবৈধভাবে দখলের কারণে বুড়িগঙ্গা নদী ক্রমেই সঙ্কুচিত হয়ে পড়ছে। ব্রহ্মপুত্র আর শীতলক্ষ্যার পানি এক স্রোতে মিশে বুড়িগঙ্গা নদীর সৃষ্টি হয়েছিল। তবে বর্তমানে এটা ধলেশ্বরীর শাখা বিশেষ। মূলত ধলেশ্বরী থেকে বুড়িগঙ্গার উৎপত্তি। কলাতিয়া এর উৎপত্তিস্থল। বর্তমানে উৎস মুখটি ভরাট হওয়ায় পুরনো কোন চিহ্ন খুঁজে পাওয়া যায় না। রাজধানী ঢাকা থেকে অল্প দূরত্বের শহর নারায়ণগঞ্জ। দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ নৌবন্দর থাকায় শহরটির ভেতর দিয়ে প্রবাহিত শীতলক্ষ্যা নদী বহুদিন ধরেই গুরুত্বপূর্ণ। পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদ থেকে উৎপত্তি হওয়া নদীটি সারা বছরই নৌ চলাচলের উপযোগী থাকে। কিন্তু এই নদীর পানি এখন এতটাই দূষিত যে, সেখানে জলজ প্রাণের অস্তিত্ব হুমকির মুখে। বিশেষজ্ঞরা শীতলক্ষ্যার এই মৃত্যুর জন্য দায়ী করেছেন এর শিল্প বর্জ্যকে। শীতলক্ষ্যার তীর ঘেঁষে গড়ে ওঠা কারখানার বর্জ্য এই দূষণের কারণ। সেই সঙ্গে বিভিন্ন বাড়িঘরের তরল বর্জ্যও আসছে নদীতে। শীতলক্ষ্যা নদীর তীর ধরে হাঁটতে থাকলে বিভিন্ন স্থানে চোখে পড়বে নদীর তীর ঘেঁষে বিভিন্ন ধরনের স্থাপনা। আর সেসব প্রতিষ্ঠান থেকে নির্গত হচ্ছে বিভিন্ন তরল বর্জ্য। নদী ও মানুষের জীবন যেন অবিচ্ছেদ্য। এ কথা বাংলাদেশের মানুষের জন্য একটু বেশিই সম্পর্কিত। দেশের মৃতপ্রায় নদী নিয়ে তাই প্রায়ই পরিবেশবাদীসহ সাধারণ মানুষের যত উদ্বেগ। তবে নদী রক্ষার তৎপরতা অবশ্য সারা বিশ্ব জুড়েই রয়েছে। তাই নদী সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে প্রতিবছর সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রবিবার পালন করা হয় বিশ্ব নদী দিবস। তবে ১৯৮০ সাল থেকে সেপ্টেম্বর মাসের শেষ রবিবার বিশ্ব নদী দিবস পালন করা হলেও বাংলাদেশে ২০১০ সাল থেকে এ দিবস পালিত হচ্ছে। বিশ্ব নদী দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন সংগঠন এ উপলক্ষে কর্মসূচীও নিয়েছে। উৎসঃ জনকণ্ঠ প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 23 Sep, 2016 বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 24 Aug, 2016 বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প, আতঙ্ক 20 May, 2016 কতটা শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু? 18 May, 2016 ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ >> দেশ পরিণত হবে মরুভূমিতে 14 May, 2016 বজ্রাঘাত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা 02 May, 2016 কালও বৃষ্টি হতে পারে 27 Apr, 2016 উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ, হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদী 17 Apr, 2016 বিশ্বজুড়ে ঘনঘন ভূমিকম্প, বড় কম্পনের হুঁশিয়ারি শীর্ষ বিজ্ঞানীর 17 Apr, 2016 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধেয়ে আসছে আকস্মিক বন্যা 16 Apr, 2016 চারটি তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা 22 Mar, 2016 পানি সংকটের ভয়াবহতা বাড়ছে 17 Mar, 2016 যমুনায় হাঁটুজল 23 Feb, 2016 তলিয়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-চট্টগ্রাম! 05 Feb, 2016 তিস্তার সব পানিই নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, এদেশে এখন শুধু বালুচর 29 Jan, 2016 পঞ্চগড়ের পথে পথে গোলাপি-বেগুনি রডোডেন্ড্রনের বাহার 26 Jan, 2016 যানজটে শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভোগে ৭৩% মানুষ 05 Jan, 2016 ২৬ মের মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে? 03 Dec, 2015 ফের সুন্দরবন বিপর্যয়ের শঙ্কা : ৭৪৫ টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে চরে আটকা এমভি শোভন 10 Nov, 2015 কৃষির হুমকি আফ্রিকান শামুক 13 Sep, 2015 ৮০০ বাঁধ তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে! 08 Sep, 2015 মানুষকে ছায়া দেওয়াই যাঁর নেশা 02 Sep, 2015 শুক্রবার থেকে আরো বৃষ্টি! 24 Aug, 2015 ভিডিও >> মরুকরণের দিকে যাচ্ছে ঢাকা! 22 Aug, 2015 এক্সক্লুসিভ ভিডিও >> বিমানের উপর বজ্রপাত পড়লো যেভাবে 14 Aug, 2015 সালফারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাতাস 31 Jul, 2015 ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’: নামকরণের নেপথ্যে 30 Jul, 2015 ঝড়ের তীব্র বেগে উড়ে গেলো মানুষ! 30 Jul, 2015 ভিডিও >> টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ 29 Jul, 2015 সাগরে গভীর নিম্নচাপ>>৩-৪ ফ‍ুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা;আতঙ্কে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ 23 Jul, 2015 ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প >> ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে বাংলাদেশে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: সংসদ থেকে খুনের আসামিকে কেন বহিষ্কার নয়? Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম মিজানুর রহমান খান mrkhanbd@gmail.com সংসদ থেকে খুনের আসামিকে কেন বহিষ্কার নয়? 06 October 2016, Thursday সিলেটের কলেজছাত্রী খাদিজার ওপর বর্বরোচিত হামলাকারীর সঙ্গে ছাত্রলীগের সম্পর্কছেদের খবর বিশ্বাসযোগ্য হয়নি। দৃশ্যত সরকারি দলের সঙ্গে সম্পর্ক রেখে যঁারাই যেখানে অপরাধ করছেন, তঁাদের রুখে দিতে হলে সরকারি দলকে আগে উচ্চপর্যায় থেকে কঠোর রাজনৈতিক বার্তা দিতে হবে। আর সেটা শুরু করতে হলে টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগ নেতা ও মুক্তিযোদ্ধা ফারুক আহমেদ হত্যা মামলার প্রধান আসামি সাংসদ আমানুর রহমান খান রানাকে শুধু দল থেকেই নয়, সংসদ থেকে বহিষ্কার করা দরকার। ২২ মাস ‘পলাতক’ (পুলিশের খাতায়, সংসদের খাতায় দুদিন হাজির) থেকে আত্মসমর্পণের পর এখন ওই সাংসদ জামিনের দিন গুনছেন। তাঁর সম্পর্কে টাঙ্গাইলের আওয়ামী লীগদলীয় নেতা–কর্মীদের মনোভাব কী অবস্থায় আছে, সেটা গত ২৬ সেপ্টেম্বর আদালতকক্ষে উচ্চারিত একটি উক্তি থেকে পরিষ্কার। অতিরিক্ত পিপি বলেছেন, ‘তিনি আমাদের দলের সাংসদ। অথচ আমরা তাঁর জামিন চাই না। কারণ তিনি অপরাধী। পরিহাস হলো, টাঙ্গাইলের বিএনপি ও জামায়াতি আইনজীবীরা আওয়ামী লীগ সাংসদের পক্ষে জামিনের জন্য দাঁড়িয়েছিলেন। ওই সাংসদ সম্প্রতি হাইকোর্টে জামিনের দরখাস্ত করেছেন। এর শুনানি হলে তিনি হয়তো যুক্তি দেবেন যে সংসদ অধিবেশনে যোগ দেওয়া তাঁর বিশেষ অধিকার। সাংসদদের সম্পর্কে একটি জনপ্রিয় অথচ ভুল ধারণা হলো যেহেতু তাঁরা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি, তাই তাঁরা যদি কোনো গুরুতর অসদাচরণ বা অপরাধ করেন, তাহলে তাঁদের বরখাস্ত করা যায় না। চেয়ারম্যান, মেম্বার ও মেয়ররা বরখাস্ত বা অপসারিত হন। সাংসদদের যেন কিছুতেই কিছু হয় না। তাঁরা মোটামুটি ধরাছোঁয়ার বাইরে। সাংসদ কর্তৃক কান ধরে ওঠবস করানো গোপালগঞ্জের শিক্ষক মানুষটি, যিনি একাত্তরে মুক্তিযুদ্ধ করেছিলেন। তিনি যে ন্যায়বিচার পেলেন না, তা কি সংসদ দেখবে না? নির্বাচনী কর্মকর্তা পেটানো বাঁশখালীর সাংসদ মোস্তাফিজুর রহমানের বিরুদ্ধে থানায় মামলা হওয়াটাকে একটা প্রতিকার হিসেবে আমজনতাকে দেখানো হয়েছিল। ওটা আইওয়াশ ছিল। বরগুনার সাংসদ শওকত হাসানুর রহমানকে পৌর নির্বাচনে দলীয় মনোনয়ন ‘নাটকীয়ভাবে পরিবর্তনের’ কাগজপত্র আরও নাটকীয়ভাবে হেলিকপ্টারে বহন করে আলোচিত হতে দেখেছিলাম। ইউপি নির্বাচনের টাকার খেলায় সেতুমন্ত্রী ২০-২২টি ঘটনার তদন্তের কথা বলেছিলেন, তার সঙ্গে কোনো কোনো সাংসদের সম্পৃক্ত থাকার সন্দেহ ছিল। কিন্তু তদন্তের ফলাফল জানা হলো না। হাউস অব কমন্সের অন্তত এক ডজন সাংসদ ঘুষ নেওয়ার কারণে অপসারিত হয়েছেন। তাই সংসদের বাইরে সাংসদদের আচরণ খতিয়ে দেখতে সব সময় থানা-পুলিশে নির্ভরতার লাগাম টানা দরকার। বাংলাদেশ অন্তত অবয়বগত দিক থেকে ওয়েস্টমিনস্টার মডেলের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা অনুসরণ করে আসছে। আর ইংল্যান্ডে এটাই স্বীকৃত যে কোনো অসদাচরণকারী সাংসদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দায় সংসদের। হাউস অব কমন্সের এই ÿক্ষমতা নিরঙ্কুশ, যা আদালতে চ্যালেঞ্জযোগ্য নয়। এটা হলো সেই বোঝাপড়ার ফসল, যখন ‘হাইকোর্ট অব পার্লামেন্ট’ তার দ্বৈত ভূমিকা ভাগাভাগি করে নিল। দুটি আলাদা স্তম্ভের জন্ম হলো। যদিও ব্রিটেনে পার্লামেন্টকে আজও একটি জ্যেষ্ঠ আদালত হিসেবে গণ্য করা হয়, আর সেটা এই অর্থে যে পার্লামেন্ট তার নিজের উচ্ছৃঙ্খল সদস্যকে শাস্তি দেবে। কনটেম্পট অব পার্লামেন্ট ধারণাটি শুধু নাগরিকের বাক্‌স্বাধীনতা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য নয়। এটা মনে করিয়ে দেয় যে পার্লামেন্টকে তার মর্যাদা সমুন্নত রাখতে হবে। তদুপরি, পার্লামেন্টের সাজাই শেষ কথা নয়। পাশাপাশি ফৌজদারি অপরাধের পুলিশি তদন্ত এবং বিচারও হয়ে থাকে। আমি ভাবতেই পারি না, মুক্তিযোদ্ধা হত্যাকারী হিসেবে সন্দেহভাজন একজন ব্যক্তিকে সংসদে বসতে দেওয়া নিয়ে আজকের বাংলাদেশে কোনো আওয়াজ উঠবে না। পুলিশ যে কারণে তার মালপত্র ক্রোক করেছে, সেই কারণে সংসদের কি কিছুই ক্রোক করার নেই? যদি থানা–পুলিশ এবং আদালতই সব সময় সবটা করে দেবেন, তাহলে সংসদীয় শাস্তির বিধান তো ব্রিটেনের অনুসরণ করার দরকার ছিল না। যদিও বাংলাদেশের নাগরিক সমাজ সময়ে সময়ে সাংসদদের জন্য একটি আচরণবিধি প্রণয়নের দাবি তুলে আসছে; কিন্তু সংসদ সেটা কখনো কার্যকরভাবে বিবেচনায় নেয়নি। লিখিত আচরণবিধি বা আইন না থাকলে সংসদ ব্যবস্থা নিতে পারবে না, সেটা যুক্তি নয়। বর্তমান সংসদ গঠনের পর কোনো কোনো সাংসদ এমন সব আচরণ করেছেন, যা ভালো সাংসদদের মনঃপীড়ার কারণ হয়েছে। সংসদই রাজনৈতিক নৈতিকতার উৎস। পরস্পরের দায় এড়ানোর যে চিত্র ওপরে এঁকেছি, সেটা কিছুটা বদলে যাওয়া শুরু হতে পারে যদি সংসদ হস্তক্ষেপ করে। তাই আমরা দাবি তুলি, সংসদের বাইরের অসদাচরণের দায়ে সংসদকে ব্যবস্থা নিতে হবে। নারায়ণগঞ্জের শিক্ষক লাঞ্ছনার ঘটনায় সংসদের সিদ্ধান্ত কী, সেটা জাতি শুনতে চায়। সংসদের বৈধতা কোনো একদিনের ভোটাভুটির বৈধতা নির্ভর নয়। এটি এমন একটি ধারণা, যার পরীক্ষা প্রতিনিয়ত ক্ষমতার মালিকদের সামনে পেশ করতে হয়। ১৬৯৫ সালে ব্রিটেনের স্পিকার স্যার জন ট্রেভর অবৈধভাবে একটি বিল পাসে সহায়তা দিয়ে এক হাজার পাউন্ড (বর্তমান বাজারদরে ২০ লাখ পাউন্ড) ঘুষ নিয়েছিলেন। তাঁকে স্পিকারের পদ থেকেই শুধু নয়, সংসদ থেকেও বহিষ্কার করা হয়েছিল। এ ছাড়া জন অশবার্নহ্যাম এমপি এক ফরাসি ব্যবসায়ীর কাছ থেকে পাঁচ পাউন্ড ঘুষ নেন, ১৬৬৭ সালে তিনি সংসদের অবমাননার জন্য বহিষ্কৃত হন। প্রাচীন এই উদাহরণগুলো হরহামেশা হাজির করে ব্রিটিশ প্রেস। রক্ষণশীল সাংসদ জেকব রিজ মগ ২০১৩ সালের ৪ জুন লন্ডনের টেলিগ্রাফ–এ লিখেছেন, ‘সাংসদকে শাস্তি দিতে নতুন বিধান আনার দরকার কী। অপসারণ করার ÿক্ষমতা সন্দেহাতীতভাবে সংসদের আছে।’ আমরাও তাই বলি, কোথাও লেখা না থাকলেও ব্রিটিশ পার্লামেন্ট এবং ভারতের লোকসভার মতো বাংলাদেশ সংসদেরও সেই ক্ষমতা আছে। ১৯২০ সালে হোম বনাম বারবার মামলায় ব্রিটিশ হাইকোর্টের বিচারপতি ইসাক এক রায়ে বলেছেন, প্রয়োজনে সাংসদকে নিন্দা, তিরস্কার বা অপসারণ করা যাবে। আমাদের যেসব এমপি সংসদের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করছেন এবং যা সরকারি দলের শ্রদ্ধাভাজন নেতারাও সময়ে সময়ে স্বীকার করছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে সংসদীয় শাস্তি দেখতে চাই। এর অর্থ এই নয় যে প্রচলিত ফৌজদারি আইনের প্রয়োগ স্থগিত করে এই অনুশীলন সংসদকে করতে হবে। এমপি রানাকে কাশিমপুরে রেখেই সংসদ তাঁর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে পারে। আর সেটা নিলে আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় সরকারের সংকল্প গ্রহণযোগ্যতা পাবে। হাউস অব লর্ডস সদস্যদের অবস্থান কমন্স সদস্যদের চেয়ে কঠোরতর মনে করা হয়। কিন্তু যাঁরা লর্ডসভার আজীবন সদস্য (পিয়ার) তাঁদেরও বরখাস্ত বা অপসারণের পথ খোলা রাখা হয়েছে। ব্রিটেন তার ইতিহাসে পিয়ারকেও বরখাস্ত করার উদাহরণ সৃষ্টি করেছে। আমাদের একটি উদাহরণ দরকার। আর রানাই হতে পারে তার প্রথম উদাহরণ। কারণ, টাঙ্গাইল এমন একটি অঞ্চল, যেখানে রানার অনুসারীদের একটি ক্ষুদ্র গোষ্ঠী ছাড়া আওয়ামী লীগের সব কটি সংগঠন প্রকাশ্যে রানার শাস্তি চাইছে। তাই আবারও বলি, করতে চাইলে নজিরের কোনো অভাব নেই। ব্রি​েটনে যদিও গত ২০০ বছরে ‘এটেইন্ডার্স, বিল অব পেইনস অ্যান্ড পানিশমেন্টস’ প্রয়োগ করা হয়নি কিন্তু ব্রিটেন অসদাচরণকারী এমপিকে অপসারণ করতে থেমে নেই। তারা ১৬৬৭ থেকে ১৯৫৪ পর্যন্ত ৬০ জন এমপিকে অপসারণ করেছে। এ-সংক্রান্ত পুরো একটি তালিকা আমি নিলাম ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ২০০৭ সালের রায় থেকে। তাই বলি, প্রশ্নটি রাজনৈতিক সদিচ্ছার, আইনগত বাধা নেই। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট পি ভি নরসীমা রাও বনাম রাষ্ট্র মামলায় ১৯৯৮ সালের ১৭ এপ্রিল বলেছেন, ‘কোনো অপরাধ সংঘটনের জন্য সংসদ শুধু যে সাংসদকে শাস্তি দিতে পারে তা-ই নয়, যারা তার সঙ্গে চক্রান্ত করেছে, তাদেরও শাস্তি দিতে পারে। তবে শর্ত হলো সাংসদকে সংসদীয় প্রিভিলেজ লঙ্ঘন কিংবা তার অবমাননার দায়ে অভিযুক্ত হতে হবে। আর সংসদের শাস্তির পরেও ফৌজদারি আইনেও অভিযুক্তের বিরুদ্ধে মামলা হতে বাধা থাকবে না।’ সুতরাং সংসদ শাস্তি দিয়ে দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক। সেটাই আমাদের এ মুহূর্তের প্রত্যাশা। তাহলে দেশের মালিকেরা আশ্বস্ত হবেন যে যাঁরা তাঁদের প্রতিনিধি পরিচয়ে এখন দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁরা মালিকপক্ষকে একদম ভুলে যাননি। ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ২০০৭ সালের ১০ জানুয়ারি ঘুষ নেওয়ার অভিযোগে ১০ এমপিকে বহিষ্কারের একটি সিদ্ধান্ত সমুন্নত রাখেন। সংসদ তার সদস্যকে বহিষ্কার করতে পারে কি পারে না, তা নিয়ে ভারতে বহু তর্ক হয়েছে। কিন্তু লোকসভার নিজের কমিটিও বলেছে, এই ক্ষমতা তার আছে। মধ্যপ্রদেশ বিধানসভায় দুজন সদস্যকে বহিষ্কারের পর তার বৈধতা চ্যালেঞ্জ করা হয়েছিল এই যুক্তি দেখিয়ে যে হাউস অব কমন্স তার সদস্যকে অসদাচরণের জন্য বহিষ্কার করতে পারে। কিন্তু সেই বিধান ভারতের সংবিধান গ্রহণ করেনি। মধ্যপ্রদেশ হাইকোর্ট সেই যুক্তি প্রত্যাখ্যান করেছিলেন। আমরা ব্রিটেন ও ভারতের উদাহরণ দিতে ভালোবাসি। ১৯৫১ সালের ৮ জুন এইচ জি মুদগাল লোকসভা থেকে প্রথম বহিষ্কার হন। দ্বিতীয় ঘটনায় ১৯৭৮ সালের ১৯ ডিসেম্বর মিসেস ইন্দিরা গান্ধীসহ আর কে ধাওয়ান ও ডি সেন। আর ১৯৭৬ সালের ১৫ নভেম্বর রাজ্যসভা থেকে সুব্রামনিয়াম স্বামী বহিষ্কৃত হয়েছিলেন। ১৯৪৭ ও ১৯৫৪ সালে হাউস অব কমন্স দুজন এমপিকে বহিষ্কার করেছিল। সে কথা উল্লেখ করে ২০০৭ সালে ভারতের সুপ্রিম কোর্ট বলেছেন, ‘ভারতের সংবিধানের ১০৫(৩) অনুচ্ছেদের আওতায় ধরে নিতে হবে যে বহিষ্কারের ক্ষমতা লোকসভার আছে। আর আমরা এটাও বলছি যে বহিষ্কারের ক্ষমতার প্রয়োগ সংবিধানের অন্য কোনো বিধানের সঙ্গে অসংগতিপূর্ণ হবে না।’ ভারতের সুপ্রিম কোর্ট ওই ৬০ জন কমন্স এমপির বহিষ্কারের তালিকা দিয়ে বলেছেন, লোকসভার বহিষ্কারের ক্ষমতা বৈধ। আমরাও তা-ই বলব। বাংলাদেশ সংবিধানের ৭৮ অনুচ্ছেদের আওতায় এটা তার ‘ইনহেরেন্ট পাওয়ার।’ সুতরাং প্রাজ্ঞ সাংসদদের কাছে বিনীত নিবেদন রাখব যে, এই ক্ষমতা যে আমাদের হাউস অব দ্য নেশনের আছে, সেটা অন্তত আপনারা বিবেচনায় নিন। রাষ্ট্রপতি মো. আবদুল হামিদ সম্প্রতি আইন কমিশনের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে বলেছিলেন, ‘ন্যায়বিচার না দিতে পারলে গণতন্ত্র বাধাগ্রস্ত হতে পারে।’ ন্যায়বিচার দেওয়া শুধু বিচার বিভাগের কাজ নয়। ফারুক হত্যা মামলায় যঁারা স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছিলেন, তঁারা উল্টো বলতে শুরু করেছেন। সন্দেহভাজন ঘাতকের অনুসারীদের শহরে ফিরতে দেখা যাচ্ছে। তাঁরা রানার জামিনের অপেক্ষায় আছেন। রানাকে এখনো দল থেকে বহিষ্কার করা হয়নি। গত ১৮ সেপ্টেম্বর রানার আত্মসমর্পণের দিন ফারুক আহমেদের স্ত্রী বলেছিলেন, ‘তোমাকে সন্তানের মতো স্নেহ করেছি, তুমি আমাকে বিধবা করলে।’ রানা মাথা নিচু করে ছিলেন। রানা সংসদে বসলে তঁার সেই নিচু মাথাটা আর নিচু থাকে না। মিজানুর রহমান খান: সাংবাদিক৷ উৎসঃ প্রথমআলো পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 07 Nov, 2016 বদির সাংসদ পদ শূন্য নয় কেন? 03 Nov, 2016 সুষ্ঠু নীতিমালা ছাড়াই পদোন্নতি আসন্ন 17 Oct, 2016 জেনেশুনে বিষপান 03 Oct, 2016 বিচারপতি অপসারণে বিভক্ত রায়ের পর্যবেক্ষণ 26 Sep, 2016 নির্বাচনে আমরা পড়শিদের চেয়ে পিছিয়ে 18 Sep, 2016 রাষ্ট্রদ্রোহ বুঝতে নীতিমালা জরুরি 17 Sep, 2016 জি-৩০-এ বাংলাদেশ 05 Sep, 2016 রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আনানের কমিশনকে স্বাগত 01 Sep, 2016 কোন সু চি রোহিঙ্গাবিরোধী? জননেত্রী নাকি নোবেলজয়ী? 22 Aug, 2016 বাবুল আক্তার অভিযুক্ত হলে বরখাস্ত করুন 15 Aug, 2016 চীনের সম্পৃক্ততা যাচাইয়ে কেজিবিএজেন্টকে ডেকেছিলেন ইন্দিরা 13 Aug, 2016 মুজিবকে বুঝতে পারেননি জোসেফ ফারল্যান্ড 11 Aug, 2016 আর্চার ব্লাডের কাছে মুজিব ছিলেন বিপ্লবী 09 Aug, 2016 শুধু জঙ্গি নয়, জলবায়ু পরিবর্তনও বড় সমস্যা 04 Aug, 2016 যাবজ্জীবন সাজা ৩০ বছর নাকি আমরণ জেল? 02 Aug, 2016 বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন স্বপ্ন লাগবে 30 Jul, 2016 জঙ্গিবিরোধী ‘সর্বদলীয়’ কমিটিতে বিএনপি? 23 Jul, 2016 মার্কিনদের সঙ্গে তাজউদ্দীনের সংলাপ 22 Jul, 2016 ব্রিটেন কি তারেককে ফেরত পাঠাবে? 21 Jul, 2016 এই সুযোগে বিচারক ‘নির্মূল’! 18 Jul, 2016 জঙ্গি মামলার সাক্ষী চাইলে সেই রায়টি মানুন 13 Jul, 2016 আইএসের হুমকি ও বাংলাদেশের প্রস্তুতি 09 Jul, 2016 সেই আটক ব্যক্তি কোথায়? 06 Jul, 2016 বিভক্ত রাজনীতিকেই দায়ী করছে বিশ্ব মিডিয়া 23 Jun, 2016 ‘রাজনীতির ধর্মীয়করণ’ প্রশ্নে জাতিসংঘ Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: ‘বদ’ হয়নি প্রেমিক, খাদিজার পাশে দেশ Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম পীর হাবিবুর রহমান ‘বদ’ হয়নি প্রেমিক, খাদিজার পাশে দেশ 07 October 2016, Friday হিংস্র, ক্ষ্যাপাটে, কসাই ‌’বদ’ বদরুল ইসলামের চাপাতির কোপে ক্ষত-বিক্ষত, মৃত্যুশয্যায় শায়িত সিলেট সরকারি মহিলা কলেজের ছাত্রী খাদিজা আক্তার নার্গিসের পাশে গোটা বাংলাদেশ দাঁড়িয়েছে। এই পাশে দাঁড়ানো মানে দানবশক্তির বিরুদ্ধে, মানবিক শক্তির পক্ষে সংহতি জানানো। খাদিজা নার্গিসের পাশে গভীর সহানুভূতি ও ভালোবাসা নিয়ে পাশে দাঁড়ানো ও অন্যদিকে পাশবিক শক্তি নিয়ে বন্যপশুর মতো হত্যার উন্মত্ততায় হামলে পড়া বদরুলের বিরুদ্ধে নিন্দা, ক্ষোভ আর ঘেন্নার সঙ্গে ক্রসফায়ারে দেয়ার মতো যে দাবি উঠেছে, তাতে এই সত্য উদ্ভাসিত হয়েছে যে অস্থির, অশান্ত, অসুস্থ, নষ্ট রাজনীতির ক্ষমতার উন্মত্ততায় কুলষিত সমাজের বুক চিড়ে যার যার অবস্থান থেকে নানা শ্রেণীপেশার মানুষ মানবিক শক্তির পক্ষে নিজেদের অবস্থান জানান দিচ্ছে। এই বর্বোরোচিত ঘটনার বিরুদ্ধে দেশে-বিদেশে ছড়িয়ে থাকা মানুষেরা যে প্রতিবাদের ঝড় তুলেছে, খাদিজা নার্গিসের স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার জন্য স্রষ্টার কাছে যে আকুতি জানাচ্ছে, তা কার্যত নারীর প্রতি জুলুম, অত্যাচার, নির্যাতন, নিপীড়ণ, ইভটিজিং, অশোভন আচরণের বিরুদ্ধে সংগঠিত প্রতিবাদ। এই খাদিজা নার্গিসের প্রতি গভীর সহানুভূতি আর বদরুলের প্রতি ঘৃণা, ধিক্কার ও ফাঁসির দাবি কার্যত শান্তিপ্রিয় মানুষের ওপর অমানুষের বর্বর আক্রমণ ও সংগঠিত যেকোনো অন্যায়, অপরাধ, জুলুমের বিরুদ্ধে তেজোদ্দীপ্ত প্রতিবাদ। এই প্রতিবাদ তনু হত্যার পর হয়েছে। এই প্রতিবাদ ইয়াসমিন হত্যার পর দেখা গেছে। এই প্রতিবাদের আগুন উইলস লিটলস ফ্লাওয়ার স্কুলের ছাত্রী সুরাইয়া আক্তার রিশাকে এক দর্জির ছুরিকাঘাতে হত্যার পর ঘটেছে। ১৯৭৬ সালে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের ছাত্রী নীহার বানুকে নৃশংসভাবে হত্যা করে লাশ পুতে রাখার প্রতিবাদে ঘটেছে। তনু-ইয়াসমিন যৌন লালসার শিকার হয়েছিল। নীহার বানু হয়েছিল সহপাঠী বাবুর প্রেম প্রত্যাখান করার কারণে। মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত খুনি বাবু জার্মানিতে পলাতক ছিল। দীর্ঘ ৪০ বছরেও তার সাজা কার্যকর হয়নি। উইলস লিটলস ফ্লাওয়ার স্কুলের মেয়েটিও একটা দর্জির প্রেম-কাম প্রত্যাখান করার কারণে জীবন দিয়েছে। তুমুল ঝড় উঠেছে খাদিজা নার্গিসের ওপর হামলার প্রতিবাদে। সিলেট এমজি কলেজ এলাকায় পরীক্ষা থেকে বের হয়ে আসার পথে প্রকাশ্য দিবালোকে প্রেমে প্রত্যাখ্যাত বদরুল চাপাতি দিয়ে শরীর ও মাথায় যেভাবে কুপিয়েছে, মোবাইল ফোনে ধারণকৃত নৃশংসতার এমন দৃশ্য কসাইদের হাতে পশু জবাইয়ের দৃশ্যকেও হার মানিয়েছে। এই নৃশংসতার চিত্র ধর্ম, বর্ণ, দল মত নির্বিশেষে দেশে বিদেশে ছড়িয়ে থাকা সকল মানুষের হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। অন্যায়ের বিরুদ্ধে, ন্যায়ের পক্ষে মানুষের ঘুমন্ত চেতনাকে এক ধাক্কায় জাগিয়ে দিয়েছে। গ্রামীণ জনপদে বেড়ে ওঠা বদরুল একসময় খাদিজা নার্গিসের বাড়িতেই আশ্রয় নিয়েছিল। থাকা-খাওয়ার কৃতজ্ঞতার বদলে প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে হত্যার উন্মত্ত নেশায় বিভৎস খুনির চেহারায় এই হামলা চালিয়েছে। দুনিয়া থেকে সরিয়ে দিতে চেয়েছে। সিলেট শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র বদরুল ইসলামকে ‘বদ’ বদরুল বলেই সবাই চিনতো। বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগ তাকে সিনিয়র সহ সম্পাদকের দায়িত্ব দিয়েছিল। ছাত্রলীগ ঘটনার পর তাদের সংগঠনের কেউ নয় বলে দাবি করে বসে। অস্বীকার করে, সে ছাত্রলীগের কেউ নয়। এমনকি আওয়ামী লীগের অতিকথনে পারদর্শী ড. হাছান মাহমুদ যখন বলেছেন, ‌’বদরুল ছাত্রলীগের কেউ নয়, শিবির হতে পারে।’ তখন মানুষ বিস্মিত হয়েছে। হাসবে না কাঁদবে বুঝে উঠতে পারেনি। ছাত্রলীগ কাউকে কোনো ছাত্রীর ওপর কেন, কোনো মানুষের ওপরই নির্দয় অত্যাচার, আক্রমণের শিক্ষা দেয়নি। তবুও যখন অসুস্থ রাজনীতির চলমান ধারবাহিকতায় ক্ষমতার উন্নাসিকতায় ও দম্ভ প্রকাশ্য রূপ নেয়, তখন বদরুলরা বেপোরোয়া হয়ে উঠে। ছাত্রলীগ শুরুতেই তাকে বহিষ্কার করে বিচার দাবি করতে পারতো। যা একদিন পর করেছে। আওয়ামী লীগ নেতা হাছান মাহমুদও বলতে পারতেন, ‘সন্ত্রাসীদের কোন দল নেই, আমরা তার শাস্তি চাই।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খাদিজা নার্গিসের চিকিৎসার দায়িত্ব নিয়েছেন। নারীর ওপর সহিংসতার বিরুদ্ধে বরাবরই তিনি সোচ্চার। আর সবসময় বলেন, ‘সন্ত্রাসীর কোনো দল নেই।’ আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম ছাত্রলীগের বেপোরোয়া একদল উন্নাসিক কর্মীর নেতিবাচক কর্মকাণ্ডে বলেছিলেন, ‘সংগঠনে ছাত্র শিবিরের অনুপ্রবেশ ঘটেছে। মানুষ এটা আমলে নেয়নি।’ আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য, সেতু মন্ত্রী এবং ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি ওবায়দুল কাদের বলেছেন, ‘ছাত্রলীগের ওষুধ নয়, অপারেশন প্রয়োজন।’ মানুষের মনের কথাই বলেছেন। এই ওবায়দুল কাদের ছাত্রলীগের সভাপতির পদ থেকে দায়িত্ব শেষে সাংবাদিকতা পেশায় যুক্ত হয়েছিলেন। বাংলার বাণীর সহকারী সম্পাদকই ছিলেন না, বিভিন্ন সাপ্তাহিক ও দৈনিকে কলাম লিখে জীবিকা নির্বাহ করতেন। এখন একটি জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি হলেই গাড়ি ও বিত্ত বৈভবের মালিক হয়ে যান। ছাত্রলীগের একজন সাধারণ সম্পাদক ক্ষমতার ছায়ায় থেকে লন্ডনে বসতি গড়েছেন। এই বিষয়গুলো দলকে আজ উপলব্ধি করতে হবে। একদিকে আদর্শের রাজনীতির অনুপস্থিতি, অন্যদিকে মূল্যবোধের চরম অবক্ষয়, আরেকদিকে ছাত্রসংসদ নির্বাচন বন্ধ করে ছাত্র রাজনীতির সৃজনশীল নেতৃত্ব ও কর্মতৎপরতার পথ রুদ্ধ করে দিয়ে যে বন্ধ্যাত্ব তৈরি হয়েছে, তাতে গোটা ছাত্ররাজনীতিই এখন ক্যান্সারে আক্রান্ত। অথচ সুষ্ঠুধারার দুয়ার খুলে দিলে দেশপ্রেমিক তরুণরা আদর্শবোধ নিয়ে অতীতের গৌরবময় ছাত্ররাজনীতির উজ্জ্বলতা ফিরিয়ে দিত। যে সংকট একদিনে তৈরি হয়নি, দিনে দিনে যে সংকট সমাজ জীবনে সর্বগ্রাসী রূপ নিয়েছে তার অবসানও একদিনে সম্ভব নয়। কিন্তু যেখানেই অন্যায়, যেখানেই বাড়াবাড়ি, যেখানেই উন্মত্ততা, যেখানেই বেআইনি কর্মকাণ্ড সেখানেই কে কোন দল, সেটি বিবেচনায় না নিয়ে আইনের প্রয়োগ সকল অপরাধীর জন্য সমানভাবে কার্যকর করে দিলেই এটি কমে আসবে। সরকারি দলের লোকজনের জন্য এক আইন, বিরুদ্ধ মতবাদীদের জন্য অন্য আইন; সমাজ জীবনে শান্তি ও স্বস্তি ফিরিয়ে আনবে না। ছাত্রলীগ নিয়মিত ছাত্রদের সংগঠনে পরিণত করতে হলে গঠণতন্ত্র অনুসারে পরিচালনা, নিয়মিত সম্মেলন ও টেন্ডারবাজি, চাঁদাবাজিতে গেলেই সাংগঠনিক ও আইনগত পদক্ষেপ গ্রহণের নজির স্থাপন করতে হবে। বদরুলের নৃশংসতায় মানুষের হৃদয়ই কেঁপে উঠেনি, যেন আল্লাহর আরশ কেঁপে উঠেছে। বুকে পাথর বেঁধে লজ্জ্বা, অপমান ও ঘৃণায় তার গর্ভধারিণী মা বলেছেন, ‘এমন কুলাঙ্গার আমার সন্তানের মা আমি নই, ওর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।’ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম থেকে সর্বত্র প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে। সমাজ জীবনে সংবিধান ও আইনের ঊর্ধ্বে কেউ নন; এর কার্যকরিতা প্রতিষ্ঠার সময় এখন। চারদিকে শত বদরুলের আবির্ভাব ঘটার আগেই এই দানবীয়তা রুখতে হলে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে আদর্শিক রাজনীতি, সুশাসন, ন্যায়বিচার ও আইনের শাসন প্রয়োগ বড় প্রয়োজন। প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে যে তরুণ বা পুরুষ প্রতিহিংসায়, খুনির চেহারায় তরুণী বা নারীর ওপর পাশবিক আক্রমণ চালায়; সে কখনোই প্রেমিক হওয়া দূরে খাক, মানুষই হতে পারেনি। একজন প্রকৃত প্রেমিককে আগে মানুষ হতে হয়। তারপর প্রেমিক হতে হয়। প্রেম সাধনার মধ‌্য দিয়ে প্রেমিক-প্রেমিকার জন্ম দেয়। বদরুলরা মানুষ হবার পাঠ পায়নি পরিবার, সমাজ ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে। অসুস্থ রাজনীতি, ইয়াবার মত ড্রাগের আগ্রাসন, অস্ত্র, সন্ত্রাস ও পেশীশক্তিনির্ভর নষ্ট রাজনীতির দাম্ভিক উন্নাসিকতা এদেরকে অন্ধকার পথে ঠেলে দিয়ে দানবে পরিণত করেছে। মানব হতে পারছে না। এরা হৃদয় দিয়ে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর পাঠ করলে প্রেমে প্রত্যাখ্যাত হয়ে খুনির চেহারায় আবির্ভূত হতো না। বিরহের যাতনাবোধ করতো। এরা কবি নজরুলকে পাঠ করতে শিখেনি। যদি শিখতো তাহলে হৃদয়ের গভীর আকুতি থেকে মন দিয়েই খাদিজা নার্গিসকে জয় করতে চাইতো। এরা কাহলিল জিব্রানের নাম শোনেনি; পাঠ করা তো দূরে থাক। যুক্তরাষ্ট্রে ঠাঁই নেয়া লেবানিস এ কবি কাহলিল জিব্রান যার সঙ্গে প্রেমে বাধা পড়েছিলেন আমৃত্যু তার দর্শন পাননি। চীনের কবি লি পাই জোছনা রাতে নদীর জলে প্রেয়সীর মুখ দেখতে দেখতে ঝাঁপ দিয়ে সলীল সমাধি বরণ করেছেন। বদরুলরা প্রেমিক হতে পারেনি, মানুষ হতে পারেনি। এর দায়ও রাষ্ট্র-সমাজ এড়িয়ে যেতে পারে না। পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র ও রাজনীতির জন্য এ প্রবল ঝাঁকুনি। তার মানে এই নয়, এমন নৃশংসতার পর বদরুল আইনের ফাঁক গলে বেরিয়ে যাবে। কয়েকদিন পর ধীরে ধীরে তনু হত্যার মতো খাদিজা নার্গিসের ওপর সংগঠিত নৃশংসতার প্রতিবাদ স্তিমিত হয়ে আসবে। প্রভাবশালীদের কেউ কেই আইনের ফাঁক গলে বদরুলকে বের করে সমাজে সন্ত্রাসের মুকুট পড়িয়ে আরো বেশি দানবীয় রূপে আবির্ভূত করবেন। এই জানোয়ারের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি এ কারণেই হওয়া প্রয়োজন, যাতে আর কোনো প্রেমিকের বেশে দানবের আর্বিভাব না ঘটে। থাদিজার প্রবাসী বাবা-ভাই ফিরে এসেছেন। দাবি করছেন, দ্রুত বিচার ট্রাইবুনালে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। সেটিই এখন মানুষের প্রত্যাশা। সুস্থ হয়ে খাদিজা ফিরে আসুক তার স্বপ্নের জীবনে। তার প্রতি বাংলাদেশের হৃদয় যেভাবে জেগেছে, মানুষ যেভাবে পাশে দাঁড়িয়েছে তা থেকে সকলের উপলব্ধি প্রয়োজন, মানুষ অন্যায়ের বিরুদ্ধে ছিল, আছে এবং থাকবে। লেখক: প্রধান সম্পাদক, পূর্বপশ্চিমবিডি.নিউজ পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 03 Oct, 2016 আছে কেবল রাজদুর্নীতি ও রাজভিখেরি… 02 Sep, 2016 বিশ্বাসঘাতকতার দৃশ্য বঙ্গবন্ধু দেখেননি, শেখ হাসিনা দেখেছেন 16 Aug, 2016 আশরাফের হৃদয়ে বঙ্গবন্ধুর আত্মার ক্রন্দন শোনেছি 16 Jul, 2016 আদর্শের রাজনীতি ও গণতন্ত্রের দুয়ার খুলে দাও 27 Apr, 2016 আমার বাড়ির আঙিনায় গুপ্তঘাতক কারা 19 Apr, 2016 জাহান্নামের আগুনে পুড়ি বেহেস্তের দেখা পাই না 12 Apr, 2016 কারাগার আছে, জননেতা ও রাজবন্দী নেই 07 Apr, 2016 বিএনপির টার্গেট জাতীয় নির্বাচন 01 Apr, 2016 এই রক্তক্ষয়ী ইউপি নির্বাচনের কি প্রয়োজন ছিল? 21 Mar, 2016 কবিরা কেন রাজভিখিরি হয়? 16 Mar, 2016 চাপের মুখেই রাখাল বালকের বিদায় 12 Mar, 2016 হ্যাকিং নাকি বিশ্বসেরা রাবিশ ডাকাতি? 10 Mar, 2016 এত আওয়ামী লীগ কোথায় ছিল? 04 Dec, 2015 সময়ের দরজায় কড়া নাড়ি 16 Oct, 2015 দৃশ্যমান শক্তির চেয়ে অদৃশ্য শক্তি ভয়ঙ্কর 22 Jun, 2015 একালের আওয়ামী লীগকে কেনা যায় 18 Jun, 2015 মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, বঙ্গবন্ধুর প্রিয় জহুরকে মনে পড়ে? 29 May, 2015 প্রেসক্লাবে গণতন্ত্রের সূর্য ডুবছে, রক্তক্ষরণ হচ্ছে 13 May, 2015 কৌশলী হতে গিয়ে কি যাত্রার কুশীলব হব? 10 May, 2015 পুলিশ কখনো অন্যায় করে না, সে যতক্ষণ আমার পুলিশ 08 May, 2015 বিএনপির মেয়র হলে বরখাস্ত, আওয়ামী লীগ হলে মন্ত্রী! 08 May, 2015 আবেগের মুজিব কোট গায়ে নেই, আনিস কি আওয়ামী লীগার নন? 04 May, 2015 খেলারাম খেলে যাও, এত তেল কই পাও? 02 May, 2015 বাংলাদেশ এখন ইতিহাস 25 Apr, 2015 ছক্কায় প্রেমিকার চুলের মতো বল ওড়ে, রাস্তায় ভাঙে খালেদার গাড়ি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 11 June 2016, Saturday ছয় দফায় ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে মানুষ মরেছে। সংখ্যা এখন খুব ধর্তব্য নয়। শুধু সংখ্যা রাজনৈতিক বাস্তবতার ইঙ্গিত হতে পারে; কিন্তু সংকটের পরিসর ও গভীরতার নির্দেশক হতে পারে না। তাছাড়া কয়জন মরেছে, কতজন পঙ্গু হয়েছে, কতজন নিখোঁজ আর কতজন পুলিশের ভয়ে গ্রামছাড়া সেটা সুনির্দিষ্ট করে নির্ণয়ের উপায় নাই। দ্বিতীয়ত, ব্যাপক প্রাণহানির যে ধারা তৈরি হল, তা গ্রামাঞ্চলকে মূলত আরও রক্তপাতের দিকেই ঠেলে দেয়া হয়েছে। দ্বন্দ্ব ও বিভাজন জাতীয় পর্যায়ে কমবেশি সীমাবদ্ধ ছিল; প্রবল দুশ্চিন্তার বিষয় হচ্ছে এখন তা গ্রামীণ সামাজিক ও পারিবারিক সংঘাতে পর্যবসিত হয়েছে। দীর্ঘস্থায়ী সন্ত্রাসের বিষ বপন করা হল। হিংসা ও হানাহানির এটা নতুন গুণগত পর্ব। অল্পদিনের ব্যবধানে পুলিশ সুপারের স্ত্রীসহ খুন হয়েছেন খ্রিস্টান ব্যবসায়ী ও হিন্দু পুরোহিত। যারা শুধু সরকারি ও সুশীল ভাষ্য অনুযায়ী ‘সন্ত্রাস’ বোঝেন এবং এ সম্পর্কে আসলে কোনোই খোঁজ রাখেন না, তারা পরপর হত্যাকাণ্ডে খুবই বিচলিত হয়ে উঠেছেন। এতদিন সন্ত্রাস দমনের কথা বলে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থা, আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড ও গুম-খুনের মেশিনের পক্ষে ক্রমাগত সাফাই গাওয়া হচ্ছিল। এখন দেখা যাচ্ছে সন্ত্রাস কমেনি, বেড়েছে। তার বিশেষ প্যাটার্ন ও রূপও ক্রমশ পরিদৃশ্যমান হচ্ছে। সন্ত্রাস দিয়ে সন্ত্রাস, কিংবা হিংসা দিয়ে হিংসা বন্ধ করা যায় না। তদুপরি এই লেখা যেদিন লিখছি তার আগের তিন দিনে আইনশৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে বন্দুকযুদ্ধে নিহত হয়েছেন সাতজন। এর মধ্যে গতকালই রাজধানীতে নিহত হয়েছেন তিনজন। ‘বন্দুকযুদ্ধ’ চলছে। এই ধরনের হত্যাকে মানবাধিকার সংগঠনগুলো ‘আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড’ এবং মানবাধিকার ও আইনের শাসন উভয় দিক থেকেই অপরাধ বলছেন। কিন্তু মানবাধিকার সংগঠনগুলোকে লিখিতভাবে সাবধান করে দেয়া হয়েছে এটা যেন তারা না বলে। এটা ‘বন্দুকযুদ্ধ’। এই ধরনের খুনে আইন ও মানবাধিকারের কোনো ব্যত্যয় ঘটেনি। এই যখন অবস্থা পুলিশ তখন ঘোষণা করেছে, তারা সাত দিনের জঙ্গিবিরোধী ‘সাঁড়াশি অভিযান’ চালানোর জন্য নামছে। যদি আমরা আসলেই নীতি ও আইন সম্পর্কে সতর্ক থাকি তাহলে বুঝতে হবে এই প্রকার উচ্চমার্গীয় পুলিশি ভাষা ব্যবহার আগাম সতর্ক সংকেতের মতো। বিশেষত যখন আইনবহির্ভূত হত্যাকাণ্ডকে আইন ও মানবাধিকারবিরোধী বলা জরুরি হলেও সেভাবে চিহ্নিত করা যাবে না বলে নিষেধ রয়েছে। মানবাধিকার কর্মীদের ‘বন্দুকযুদ্ধ’ই বলতে হবে। তাহলে আমরা আন্দাজ করতে পারি বন্দুকযুদ্ধেরই প্রস্তুতি নিয়েছে পুলিশ। একজন পুলিশ অফিসার দেখেছি সরাসরি যুদ্ধেরই ডাক দিয়েছেন। ভেবে দেখুন আমরা এখন কোথায় এসে পড়েছি। পুলিশ নাগরিকদের মনোবলে মলম দিতে চাইলে তাদের উৎকণ্ঠার আগুনে ঘি পড়ছে। ভাষা হিসেবে ‘সাঁড়াশি অভিযান’ সন্ত্রাসের পাল্টা পরিভাষা মাত্র। আমাদের প্রশ্ন করতে হবে আমাদের সমস্যা বা সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? আদৌ কি পুলিশি সমস্যা? আদতেই কি তা ব্যক্তি বা বিচ্ছিন্ন দল বা গ্র“পের সন্ত্রাস? নাকি পুরাটাই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসেরই এপিঠ-ওপিঠ মাত্র। রাষ্ট্র, আইনশৃংখলা বাহিনী ও প্রশাসন যখন চরম সন্ত্রাসী চরিত্র পরিগ্রহণ করে, তখন তার পাল্টা প্রতিরোধ হিসেবে পাল্টা সন্ত্রাসই দানা বাঁধে। বাঁধবেই। এর অন্যথা হয় না। একে দমন করা যাবে কিনা তা নির্ভর করছে দুইপক্ষের রাজনৈতিক বয়ান ও কৌশলের ওপর। একপক্ষ হচ্ছে রাষ্ট্র ও সরকার নিজে এবং তার প্রতিনিধিরা আর উল্টা দিকে আছে যারা তাদের রাজনৈতিক উদ্দেশ্য সাধনের জন্য সন্ত্রাস বলি কী সহিংসতা বলি- বিশেষ কৌশল অবলম্বন করছে। আমরা তাদের অপছন্দ করতে পারি, ঘৃণা করতে পারি, নিন্দা জানাতে পারি- তাতে বাস্তবের কোনো হেরফের হবে না। রাষ্ট্র যাদের নির্মূল করতে চায় বর্তমান পরিস্থিতিতে তারাই লাভবান হবে। বিশেষত যেখানে ক্ষমতাসীনদের বৈধতা ও ন্যায্যতা প্রশ্নবিদ্ধ এবং বিদ্যমান রাষ্ট্র কোনো অর্থেই জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায় ধারণ করে না। সরকারের বয়ানের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নাই, কৌশল অকার্যকর বা প্রমাণিত। অনেকেই তাই ধারণা করছেন আমরা খুব বড় ধরনের সংঘাতের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছি। অবশ্য বড় ও দীর্ঘস্থায়ী সংঘাতের আশংকার কথা আমি এর আগেও বলেছি। কিন্তু আমরা কেউই নিশ্চয়ই তা চাইব না। যদি আসলে না চাই তাহলে পরিস্থিতিকে ইতিহাস ও বাস্তবতার নিরিখেই আমাদের বুঝতে হবে। কোনো পক্ষের প্রপাগান্ডা কিংবা পূর্ব অনুমানের ভিত্তিতে মূল্যায়ন করে নয়। সমাজ এখন এতই বিভক্ত ও খণ্ড খণ্ড হয়ে রয়েছে যে অনেকেরই ভাষা, দাবি-দাওয়া ও কর্মকাণ্ড আমরা আর আগের মতো বুঝি না। আগে বুঝতাম সেটা দাবি করা যাবে না। কিন্তু এখন তা বুদ্ধির অগম্য হয়ে গিয়েছে। পরিস্থিতি আসলে খুবই জটিল। আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বাস্তবতা বর্তমান পরিস্থিতির জন্য দায়ী, সেটা বোঝা কঠিন নয়। শক্তিশালী রাষ্ট্রগুলো তাদের নিজেদের ভালো ও মন্দ কিংবা স্বার্থ ও ঝুঁকির দিক নিয়ে ভাববে এতে অবাক হওয়ার কিছু নাই। নিজেদের মূল্যায়ন অনুযায়ী তারা বাংলাদেশের মতো দুর্বল দেশে হস্তক্ষেপ করবেই। কিন্তু পরিস্থিতি জটিল আরেকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ কারণে। আমরা আদৌ ষোল কোটি মানুষকে একই সমাজের অন্তর্গত গণ্য করি না। সবাইকে নিয়ে ভাবতে আমরা অভ্যস্ত নই। কোনো সমস্যা বা সংকট নিয়ে গভীর ও বাস্তবোচিতভাবে ভাবতে পারা তো পরের ধাপ। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের অধিকাংশই যখন মনে করে যে ছেলেটি ইসলামপন্থী রাজনীতি করে তাকে নির্মূল করলেই দেশে শান্তি আসবে, তাহলে তা পাল্টা রক্তপাত আর অশান্তি ছাড়া আর কিছুই বয়ে আনবে না। এ ধরনের নির্মূল করবার মানসিকতা ইসলামপন্থার পক্ষে যত ক্ষুদ্রই হোক স্রেফ মানবিক কারণেই রাজনৈতিক সমর্থন গড়ে তুলবে। যে ইসলামপন্থী রাজনীতি সেক্যুলাররা প্রবল অপছন্দ করে তা গড়ে ওঠার কারণ ধর্মনিরপেক্ষবাদী নিজেরাই। গণমাধ্যমে সরকারের পক্ষের গোয়েন্দাদের তথ্যকে যদি সঠিক মানি, তাহলে দেখা যাচ্ছে জেএমবির শীর্ষ নেতাদের ফাঁসি দিয়ে জেএমবির বিস্তার রোধ করা যায়নি। তারা বেড়েছে ও বাড়ছে। যারা তাদের রাজনীতিকে সঠিক গণ্য করেছে, তাদের কাছে তারা শহীদের মর্যাদাই পাচ্ছেন। যদি অন্যদিকে ইসলামপন্থীরা মনে করে বিধর্মী, নাস্তিক ও ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের হত্যা করলে বাংলাদেশে ইসলাম কায়েম হয়ে যাবে তাহলে তারা নিজেদের অজান্তে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক হস্তক্ষেপের পরিস্থিতিকেই ত্বরান্বিত করছে। সাম্প্রতিক হত্যাকাণ্ডগুলোকে এই আলোকে ভাববার যথেষ্ট কারণ রয়েছে। এই অভাগা দেশটির সার্বভৌমত্ব সংকট নিয়ে ভাববার কেউই নাই আসলে। দুই সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে আমাদের ধারণা অনৈতিহাসিক ও অস্পষ্ট। তার নানান মাত্রা ও স্তরভেদ আছে। ঔপনিবেশিক আমলে সূর্য সেন অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করেছেন। ব্রিটিশদের চোখে তিনি সন্ত্রাসী। আইরিশ রিপাবলিকান আর্মির বিপ্লবী আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে শুধুমাত্র হিন্দু সদস্য নিয়ে গঠিত নিজের দলের নাম পরিবর্তন করে তিনি ‘ইন্ডিয়ান রিপাবলিকান আর্মি, চিটাগাং ব্রাঞ্চ’ করেছিলেন। বাংলায় নাম দিয়েছিলেন ‘ভারতীয় প্রজাতান্ত্রিক বাহিনী, চট্টগ্রাম শাখা’। বলাবাহুল্য ঔপনিবেশিক শাসকের কাছে তিনি সন্ত্রাসী ও অপরাধী। তিনি তার যুদ্ধের যে ছক এঁকেছিলেন তার মধ্যে ‘দলে দলে ইউরোপিয়ানদের হত্যা’ করাও অন্তর্ভুক্ত ছিল। কিন্তু সূর্য সেন ঔপনিবেশিক ভারতের শাসিতদের কাছে বিপ্লবী। শুধুমাত্র হিন্দু সদস্য নিয়ে গঠিত হলেও তার দল ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীদের চোখে ‘অসাম্প্রদায়িক’। এই তর্কটুকু বাদ দিলে এটা পরিষ্কার, ঔপনিবেশিক শাসনবিরোধী এই দেশের জনগণ সূর্য সেনের ভূমিকাকে কখনোই অস্বীকার করেনি। সূর্য সেনের কর্মকাণ্ডের মধ্যে তারা তাদের নিজেদের মুক্তিই দেখেছিল। শুধু তাই নয়, শুধুমাত্র হিন্দু সদস্য নিয়ে পরিচালিত চট্টগ্রামের যুব বিদ্রোহের প্রতি মুসলমান সমাজের সহানুভূতিও মোটেও কম ছিল না। কিন্তু ইতিহাস ও স্মৃতিচর্চার বিচার যদি করি, তাহলে দেখা যায় ইতিহাসের আরও অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্যকে রাজনৈতিক কারণে আমরা ভুলে যাই, গৌণ করি, এমনকি মুছে ফেলার চেষ্টা করি। শুধু সূর্য সেন ও ক্ষুদিরাম নয়- ব্রিটিশবিরোধী ফকির-সন্ন্যাসী বিদ্রোহ, সন্দ্বীপের গণবিদ্রোহ, তিতুমীরের সশস্ত্র সংগ্রাম, সৈয়দ আহমদ বেরেলভির নেতৃত্বে সংগ্রাম এবং হাজী শরীয়তুল্লাহ ও তার পুত্র দুদু মিয়ার নেতৃত্বে ফরায়জী আন্দোলন ও তার পরে ১৮৫৭ সালে সংঘটিত সিপাহি বিদ্রোহ ইত্যাদি সব ঐতিহাসিক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাঘটনের সঙ্গে এই দেশের জনগণের ভাগ্যের উত্থান-পতন ঘটেছে। একইভাবে তাদের চিন্তা-চেতনার গঠন ও বিবর্তনও ঘটেছে। অথচ আমরা নিজেদের যে আত্মপরিচয়ের বয়ান হাজির করি, সেখানে ইতিহাসের এসব গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা এবং তার কারণে মোড় পরিবর্তনের দিকগুলো আজ অবধি চরমভাবে উপেক্ষিত। এ দেশের জনগোষ্ঠীর ইতিহাসকে আমরা স্রেফ নয় মাসের মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসের অধিক কিছু গণ্য করি না। সরকারি বয়ানের বাইরে জনগণের মধ্যে সেই ইতিহাস এ উপেক্ষার কারণে অপসৃত হয়নি। বরং ঠিকই জারি রয়েছে। এ ঐতিহাসিক বিস্মৃতি ও অস্বীকারের পরিণতি নিয়ে আমরা আদৌ ভেবেছি কি? আঠারোশ সাতান্ন সালের সিপাহি বিদ্রোহ ছিল আসলেই ভারতের প্রথম সর্বাত্মক স্বাধীনতা যুদ্ধ। কিন্তু তার সঙ্গে মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে গড়া ওঠা বাংলাদেশের ইতিহাসের সম্পর্ক আমরা কতটা বুঝি, কতটা বোঝার জন্য আগ্রহী? বিদ্রোহ প্রথমে পশ্চিমবঙ্গের দমদমে (২২ ফেব্র“য়ারি), তারপর বহরমপুর (২৫-২৬ ফেব্র“য়ারি) সেনাছাউনিতে শুরু হয়ে ক্রমে ব্যারাকপুর (২৯ মার্চ), মিরাট (৯ মে) ও দিল্লি (১১ মে) হয়ে সারা ভারতবর্ষে ছড়িয়ে পড়ে। ব্রিটিশরাজ সেই বিদ্রোহ খুবই কঠোর আর হিংস্রভাবে দমন করে। সিপাহিরা ঔপনিবেশিক শাসন থেকে মুক্তি চেয়েছিল। বিদ্রোহের ব্যর্থতার কারণে বহু সৈনিককে ফাঁসির দড়িতে ঝুলতে হয়েছে। অনেককে জেলে, দ্বীপান্তরে দুর্বিষহ জীবন কাটাতে হয়েছে। সেই বছরের ১৮ নভেম্বর রাতের প্রথম প্রহরে চট্টগ্রামের সিপাহিরা বিদ্রোহে যোগ দেয় এবং অস্ত্রাগার ও কোষাগার দখল করে, জেলের কয়েদিদের মুক্ত করে দেয়। সে রাত ও পরদিন গুলিবিনিময় হয়। চট্টগ্রাম শহর সিপাহিদের দখলে আসে। ভীতসন্ত্রস্ত সরকারি উচ্চপদস্থ ইংরেজরা পরিবার-পরিজনসহ জাহাজে আশ্রয় নিয়ে জাহাজ দূরে নোঙর করে রাখে। ইতিহাসকে আমরা মুছে ফেলি, চাপা দিয়ে রাখি কিংবা চোখের আড়ালে রাখবার প্রাণপণ চেষ্টা করি; কিন্তু সেই ইতিহাস ইতিহাসের নিজ গুণেই আবার প্রত্যাবর্তন করে। বাংলাদেশে একাত্তরের পর ধীরে ধীরে গড়ে ওঠা ইসলামপন্থী রাজনীতিকে ‘ষড়যন্ত্র’ হিসেবে বুঝতে চাওয়া মানে কার্পেটের তলে ঘরের ময়লা লুকিয়ে রাখার মতো। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদী জাতিবাদী রাজনীতিরই তা অনিবার্য পরিণতি। উপমহাদেশের ঔপনিবেশিক ও সাম্রাজ্যবাদবিরোধী লড়াই-সংগ্রাম থেকে একে আলাদা করা যাবে না। কিন্তু ইসলামপন্থী বলি কিংবা ধর্মনিরপেক্ষ বলি, উভয়েই এই ইতিহাসবিরোধী বিষয়টা আলাদা করার কাজটা করে। ইসলামপন্থীদের একাংশের ধারণা তাদের লড়াই একান্তই কোরআন-হাদিস সুন্নার ভিত্তিতে নিজের আত্মপরিচয় তৈরি ও মুসলমান হিসেবে তার জাতিগত স্বার্থ রক্ষার লড়াই। অন্যদিকে ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা আজ অবধি সাম্প্রদায়িক হিন্দু ঐতিহাসিকদের ইতিহাসের বাইরে এ দেশে মুসলমান সম্প্রদায়ের নিজেদের যে আলাদা একটি ইতিহাস, বোঝাবুঝি ও উপলব্ধি আছে তাকে ক্রমাগত অস্বীকার করে এসেছে। ফলে তারা ইতিহাসের যে বয়ানটি গ্রহণ করে, তা একান্তই সাম্প্রদায়িক বয়ানের অধিক কিছু নয়। এর ইন্টারেস্টিং দিক হচ্ছে, সাম্প্রদায়িক বয়ানের বাইরে যখন উপমহাদেশে ইসলামের ইতিহাস কিংবা সম্প্রদায় হিসেবে মুসলমানদের স্বার্থ রক্ষার লড়াইয়ের তর্ক ওঠে, ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা একে সাম্প্রদায়িক বয়ানের অধিক কিছু ভাবতে পারে না। ইতিহাসের সাম্প্রদায়িক বয়ানের বিপরীতে এ দেশের গণমানুষের লড়াই-সংগ্রামের নিজস্ব ইতিহাস আছে। অথচ সেই সম্প্রদায়ের ইতিহাসকে ক্রমাগত অস্বীকার করা হয়েছে। সেই ইতিহাস বাংলাদেশের ইতিহাস হিসেবে সম্প্রদায়ের ইতিহাস হিসেবেই হাজির হবে। এর অন্যথা অসম্ভব। ধর্মনিরপেক্ষতাবাদীরা বাঙালির ইতিহাস লিখতে গিয়ে যদি উচ্চ বর্ণের হিন্দুর বয়ানকে প্রামাণ্য মানে, তাহলে তার পাল্টা আরেকটি বয়ান তৈরি হবে, সেটা সাম্প্রদায়িক বয়ানই হবে। বাংলাদেশে আমরা এই পর্যায়ে আছি। বলাবাহুল্য, যেখানে বাংলাদেশে ইতিহাস বিবেচনা ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ ক্ষীণ, সেখানে আইনের শাসন ও মানবাধিকারের কোনো তোয়াক্কা না করে পুলিশের ‘সন্ত্রাস দমন’ কিংবা ‘সাঁড়াশি অভিযান’ মূলত ইসলাম ও ইসলামপন্থীদের বিরুদ্ধে পাশ্চাত্য শক্তি ও দিল্লির সন্ত্রাসের অনন্ত যুদ্ধের স্থানীয় সংস্করণের অধিক কিছুই হবে না। এর ফলে সংঘাত ও হানাহানি পরিস্থিতিকে আরও রক্তাক্ত করবে। একে সামাল দেয়ার অভিজ্ঞতা ও প্রশিক্ষণ বাংলাদেশের আদৌ আছে কিনা অভিজ্ঞরাই বলতে পারবেন। অতএব প্রথম ও প্রধান কাজ হচ্ছে আসলে আমরা কী ধরনের জটিল ও সংবেদনশীল ঐতিহাসিক সংকট মোকাবেলা করছি, সে সম্পর্কে অবিলম্বে জাতীয় পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা করবার ক্ষেত্র তৈরি করা। সমাজ, ইতিহাস, ধর্ম বিশ্বাস, রাজনীতি, সংস্কৃতি ইত্যাদি বিভিন্ন দিক থেকে একে বোঝার জন্য আন্তরিক চেষ্টা করা। এর দায় সবার। তবে পুলিশ বাহিনীর প্রতি অনুরোধ, তারা যেন একে তাদের যুদ্ধে পরিণত না করে। নিজেদের সচেতন করে তোলার জন্য এই দায় আইনশৃংখলা বাহিনীর নিজেদেরই নেয়া উচিত। নিদেনপক্ষে তাদের বোঝা উচিত সমস্যাটা সামরিক বা পুলিশি নয়। রাজনৈতিক এবং ঐতিহাসিক। সমস্যার সমাধানও একইসঙ্গে ঐতিহাসিক বিস্মৃতির মীমাংসা ও রাজনৈতিক হতে হবে। উৎসঃ যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 25 June 2016, Saturday বাংলাদেশের রাজনীতি ‘অস্থিতিশীল’ হয়ে উঠছে, এটা নতুন কোনো কথা কিংবা নতুন কোনো খবর নয়। রাজনৈতিক ‘অস্থিতিশীলতা’র মধ্য দিয়েই বাংলাদেশের জন্ম। মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আমাদের একটি স্থি্িতশীল সমাজ ও স্থিতিশীল রাজনীতি উপহার দেবে এমনটাই কথা ছিল। সেটা ঘটেনি। মুক্তিযুদ্ধকে প্রকট আবেগ ও রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দমনের বয়ানে পরিণত করার মধ্য দিয়ে বিভেদ ও বিভাজনের রাজনীতি আমরা নিজেরাই জন্ম দিয়েছি। এখন তা দানবের মতো আমাদের গ্রাস করতে উদ্যত। স্বাধীনতা অর্জনের রাজনীতি ও যুদ্ধ আর নিজেদের একটি রাজনৈতিক গোষ্ঠীতে পরিগঠিত করার লড়াই সম্পূর্ণ দুই প্রকার ও সম্পূর্ণ দুই ভিন্ন প্রকৃতির লড়াই। একটি রাজনৈতিক জনগোষ্ঠী হিসেবে নিজেদের স্বাতন্ত্র্য নিয়ে বিশ্ব রাষ্ট্রব্যবস্থায় আমরা স্থান করে নিতে সক্ষম কিনা সেটা বোঝা যায় রাষ্ট্র গঠনসংক্রান্ত চিন্তাভাবনায়। ক্ষমতা, রাষ্ট্র, রাজনীতি, শাসনব্যবস্থা সম্পর্কে বাংলাদেশে বুদ্ধিবৃত্তিক চিন্তার সংকট প্রকট। সেই উপলব্ধিটুকু আমাদের পুরোপুরি হয়েছে বলে মনে হয় না। অস্থিতিশীলতার কারণ এখানেও নিহিত। বাংলাদেশ কেন অস্থিতিশীল সেই প্রশ্ন অনুসরণ করলে আমরা এখনকার ‘অস্থিতিশীলতা’র সঙ্গে আগের পর্যায়গুলোর মিল ও অমিল বুঝতে পারব। এখন তার পর্যালোচনা খুবই দরকার। একাত্তরের মতো কোনো প্রকার সহিংস ও রক্তাক্ত পরিস্থিতি আসন্ন কিনা সেটা এখন খুবই প্রাসঙ্গিক বিষয় হয়ে উঠেছে। অস্থিতিশীল পরিস্থিতি কেন সমাজ ও রাজনীতিতে তৈরি হয় সেটা রাজনৈতিক দলের দৃশ্যমান দ্বন্দ্ব-সংঘাত দিয়ে বোঝা যাবে না। বাস্তব পরিস্থিতিকে অর্থনীতি, সংস্কৃতি, সমাজের সামগ্রিক বুদ্ধিবৃত্তিক স্তর ও মতাদর্শিক লড়াই, ইতিহাস ইত্যাদি নানা ক্ষেত্র থেকে নানাভাবে বোঝার দরকার আছে। একেকটি কালপর্বে সমাজের সামগ্রিক পরিস্থিতির মূল সমস্যা ও তার সমাধানের উপায় সম্পর্কে একটি সাধারণ মতামত গড়ে ওঠে। রাজনৈতিক ক্ষেত্রে পরিবর্তনের সীমা ও সম্ভাবনা সেই সংখ্যাগরিষ্ঠ মত দ্বারা কম-বেশি ঠিক হয়। দুই-একটি উদাহরণ দেয়া যাক। কৃষিপ্রধান পূর্ব বাংলার মানুষ দীর্ঘ সময় ঔপনিবেশিক ইংরেজ ও হিন্দু-জমিদার মহাজনের বিরুদ্ধে লড়েছে। তার হাত থেকে মুক্তি চেয়েছে। ঔপনিবেশিক শক্তির কাছ থেকে স্বাধীন হওয়ার অর্থ বুঝেছে, একই সঙ্গে হিন্দু জমিদার মহাজনের হাত থেকে মুক্তি পাওয়া। তার সমাধানও তারা সেভাবেই ভেবেছে ও সেভাবেই করেছে। সমাধান মুসলমানদের জন্য একটি স্বাধীন রাষ্ট্র। যে সাধারণ মত পাকিস্তান পর্বে গড়ে উঠেছিল, তার মধ্যেই তার সীমা ও সম্ভাবনা নিহিত ছিল। জমিদার-মহাজনের হাত থেকে মুক্তি পেতে হলে পূর্ব বাংলার জনগণের আলাদা রাষ্ট্র দরকার- বলা বাহুল্য, বাংলার সংখ্যালঘু হিন্দু সম্প্রদায়ের সেটা ভালো লাগেনি। তারা প্রথমবার বাংলা ভাগ হওয়ার বিরোধিতা করেছে। কিন্তু দ্বিতীয়বার যখন আবার ভাগের কথা উঠল তখন তা সমর্থন করেছে। অবিভক্ত বাংলায় মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ হওয়ার কারণে হিন্দুদের সংখ্যালঘু হয়ে থাকতে হতো। সমাধান হিসেবে বাঙালি হিন্দু ও মুসলমান এই দুই ভাগে ভাগ হয়ে গিয়েছি। এখানে রাগ অভিমান রাগারাগির কিছু নাই। সত্য হল, হিন্দু-মুসলমান নিজেদের একই রাজনৈতিক জনগোষ্ঠীর অন্তর্গত ভাবতে পারেনি। বাহান্নর ভাষা আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এলো রাজনীতির রোমান্টিক যুগ। পূর্ব পাকিস্তানে নতুন যে মধ্যবিত্ত শ্রেণী ধর্ম পরিচয়ের বিপরীতে নিজেদের ‘বাঙালি’ ভাবতে শুরু করল, তাদের জগৎ থেকে তারা ইসলামকে খারিজ করে দিতে চাইল। এটা কোনো বদ মতলবে বা হিন্দুদের সঙ্গে ষড়যন্ত্র করে তারা করেনি। বাংলা ভাষা, সংস্কৃতি ও বাঙালিত্বের যে ধারণার সঙ্গে তারা ঐতিহাসিকভাবে পরিচিত সেটা উচ্চ বর্ণের হিন্দুর জগৎ। সেটাই বাঙালির পরিচয়। সেখানে বেদ, উপনিষদ, পূজা, অর্চনা সবই আছে; কিন্তু কোরআন-হাদিস, ইবাদত, বন্দেগি- এসব নাই। যারা সেই কথা তুলল, তাদের সাম্প্রদায়িক বলে নিন্দা করা হল। রাজনীতির রোমান্টিক পর্বে বাঙালির মুক্তির চিন্তার অর্থ দাঁড়াল পাকিস্তানিদের হাত থেকে দেশ স্বাধীন করা এবং ইসলামের সঙ্গে বাংলা ভাষা ও সংস্কৃতির বিচ্ছেদ চিরস্থায়ী করা। এটা ছিল অবাস্তব চিন্তা আর এই অর্থেই রাজনীতির এই কালটাকে রোমান্টিক বলছি। ধর্ম ও ধর্মভিত্তিক রাষ্ট্রই এই পর্বে দুষমন হয়ে দাঁড়াল। সদর্থে ভাবলেও এই রোমান্টিকতাকে সেকুলারিজম বা ধর্মনিরপেক্ষ ভাবার কোনো কারণ নাই। বাংলা সংস্কৃতি ও আত্মপরিচয় নির্মাণের পরিসর থেকে ইসলাম ও ইসলামের ইতিহাসকে খারিজ করে দেয়া ছিল চরম সাম্প্রদায়িক একটি পর্ব। কিন্তু প্রবল রোমান্টিকতা এই বিশ্বাস জনপ্রিয় করে তুলেছিল যে, বাংলাদেশ স্বাধীন হতে পারলে দুধে-ভাতে বাঙালির জীবনে সুখের ফোয়ারা উথলে উঠবে। এই রাজনৈতিক রোমান্টিকতা ঊনসত্তরের পর থেকে যুদ্ধোত্তর বাংলাদেশে চুয়াত্তরের দুর্ভিক্ষ অবধি প্রবলভাবেই জারি ছিল। সত্তরের দুর্ভিক্ষ বাংলাদেশের জনগণের রাজনৈতিক মনোগঠনে ঠিক কী প্রভাব ফেলেছে তা নিয়ে কোনো সিরিয়াস আলোচনা চোখে পড়েনি। তবে অনুমান হলেও নিশ্চিত বলা যায়, ‘ধন ধান্যে পুষ্পে ভরা’ অথবা ‘সোনার বাংলা’ ধরনের রাবীন্দ্রিক রোমান্টিকতার ক্ষয় শুরুর কাল সেটি। এই সেই সময় যখন পেটিবুর্জোয়া তরুণরা হাড়ে হাড়ে বুঝতে শুরু করেছে, যুদ্ধ করা যত সহজ, রাষ্ট্র গঠন ও পরিচালনা তত সহজ নয়। বিশেষত যুদ্ধোত্তর দেশের অবকাঠামো পুনর্গঠন, প্রশাসনে শৃংখলা আনা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা খুবই বিশাল একটি কাজ। পঁচাত্তরের পরের পর্বকে আমি বলি সাংবিধানিক পর্ব। রাষ্ট্র গঠনের ক্ষেত্রে দলীয় মতাদর্শ জনগণের ওপর চাপিয়ে না দিয়ে একটি গণতান্ত্রিক গঠনতন্ত্রের প্রয়োজনীয়তা সম্বন্ধে ধীরে ধীরে জনগণের সচেতন হওয়ার কাল। এই পর্বটি দীর্ঘ, কণ্টকময় ও কঠিন। কিন্তু এটা স্বীকার করতে হবে যে, আশির দশকের আগে সাংবিধানিক তর্ক খুব কমই হয়েছে, কিংবা হলেও তা জনগণকে খুব কমই আকৃষ্ট করেছে। বাংলাদেশে সাংবিধানিক বিষয়াদি নিয়ে আলোচনা ও তর্ক আগের চেয়ে বেড়েছে, এটা সবাই স্বীকার করবেন। মানের দিক থেকে এসব বিতর্ক মাঝে-মধ্যে নিু হলেও রাষ্ট্র গঠন একটি গুরুত্বপূর্ণ কাজ এই উপলব্ধি আগের চেয়ে বেড়েছে। শুধু আবেগে চিড়া ভিজবে না, এই বোধটুকু পোক্ত হচ্ছে। কিন্তু এই রাষ্ট্র গঠনের তর্ক এখনও আইনি তর্কে সীমিত। রাজনীতি ও রাজনৈতিক লড়াই-সংগ্রামের সঙ্গে কন্সটিউটিশনের সম্পর্ক এখনও বাংলাদেশে অস্পষ্ট। যদিও বাংলাদেশের বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশের স্তর চেনার ক্ষেত্রে সাংবিধানিক বিতর্ক সবচেয়ে বেশি নির্ভরযোগ্য ও ছহি জায়গা। এখানেই সমাজের চিন্তা দুধ থেকে মাখন তোলার মতো ভেসে ওঠে। আমার ধারণা, বাংলাদেশের সমস্যা সমাধান করতে চাইলে জনগণের ইচ্ছা ও অভিপ্রায়ের ভিত্তিতে একটি নতুন সংবিধান প্রণয়নের প্রয়োজনীয়তা এখন অতীতের যে কোনো সময়ের চেয়ে অনেক বেশি আদৃত ও বাস্তবসম্মত বলে বিবেচিত হবে। বাংলাদেশে গুম, খুন, হত্যা, হত্যাকারীদের পার পেয়ে যাওয়া, পুলিশ ও গোয়েন্দা বিভাগের ভূমিকা, অকথ্য দমন-পীড়নের রাজনীতি ও প্রতিশোধপরায়ণতা আমাদের যতই হতাশ করুক, আসলে হতাশ হওয়ার কিছু নাই। বাংলাদেশ পিছিয়েছে বলা যাবে না, এগিয়েছে। দুই কোন যুক্তিতে বাংলাদেশ এগিয়েছে সে সম্পর্কে আরও দুই-একটি কথা বলে আমি আজকের লেখাটি শেষ করব। বাংলাদেশে কাল্পনিক রাজনৈতিক রোমান্টিকতার পর্ব মোটামুটি শেষ হতে যাচ্ছে। সামনে অনেক বড় লড়াই আসন্ন। ডান কিংবা বাম কোনো রাজনীতিতেই রঙিন ফানুস দেখিয়ে জনগণকে আকৃষ্ট করা যাচ্ছে না। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে অনন্ত যুদ্ধের গল্প বানিয়ে যে ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্র খাড়া করা হয়েছে, তার খিলান এখন অত মজবুত নয়। ক্ষমতার পক্ষে সমর্থন আদায় করতে কীভাবে কোটি কোটি টাকা চুরি ও পাচার হচ্ছে তা দেখেও এটা বোঝা যায়। অবশ্য যদি বুঝি যে কোনো আদর্শগত কারণে ক্ষমতাসীনরা টিকে নাই। তাদের দুটি মাত্র হাতিয়ার। এক. জনগণকে ক্রমাগত এবং ত্রাস কায়েমের মধ্য দিয়ে শাসন। দুই. ক্ষমতার সঙ্গীদের অবাধ লুটপাট করতে দেয়া। স্রেফ লুটপাটের সুবিধা দিয়ে ক্ষমতার ভিত্তি টিকিয়ে রাখা। এটা বালুর বাঁধের মতো। ভাঙবে। দ্বিতীয় অগ্রগতি আমি দেখছি ক্ষমতাসীনদের প্রতি আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তনে। ক্ষমতাসীনরা যদি আসলেই সন্ত্রাস দমন করতে সক্ষম হয়ে থাকে, তাহলে ক্রমাগত আইএসের নামে বা বেনামে হত্যাকাণ্ড সরকার বন্ধ করতে পারছে না কেন? শুধু তাই নয়, আইএস ও আল কায়দার উপস্থিতি সরকার ক্রমাগত অস্বীকার করার কারণে আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক ক্ষেত্রে সরকারের গ্রহণযোগ্যতা কমেছে। নরেন্দ্র মোদি ভারতের অভ্যন্তরীণ রাজনীতির কারণে বাংলাদেশে হিন্দুদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য চাপ দিচ্ছেন। তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয়ে সরাসরি নাক গলাচ্ছেন। সুষমা স্বরাজ শেখ হাসিনার সরকারের কর্মকাণ্ডে আস্থার কথা বললেও প্রকাশ্যে আস্থার কথা বলাটাই মূলত আস্থাহীনতার লক্ষণ। সত্য যে অনেকেই বলছেন, একটা ঝড় আসছে। কিন্তু তাকে হতাশার রঙ দিয়ে বিষণ্ণ করে দেয়ার কোনো কারণ নাই। কারণ অতীতের চেয়ে আরও অনেক স্পষ্টভাবে আমরা আমাদের কর্তব্যগুলো জানি ও বুঝি। পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে। পুরনো কড়ি-বর্গা-ইট-পাথর কোনো কাজে আসবে না। উৎসঃ যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: আটষট্টির শুরুতে চিন্তা Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম সৈয়দ মুহাম্মদ ইব্রাহিম mgsmibrahim@gmail.com আটষট্টির শুরুতে চিন্তা 04 October 2016, Tuesday জীবনের অনেকগুলো বছর কেটে গেল। গত পরশু ৩ অক্টোবর ২০১৬, সোমবার ছিল আমার জীবনের ৬৭তম বছরের শেষ দিবস। অর্থাৎ গতকাল ৪ অক্টোবর, মঙ্গলবার ছিল ৬৮তম বছরের প্রথম কার্যদিবস। কার্যদিবস বা কর্মদিবস বা ইংরেজিতে ওয়ার্কিং ডে বলতে সাধারণত কর্মজীবী মানুষের চাকরির স্থলে বা কর্মস্থলে কর্ম সম্পাদনের সাথে সম্পর্কিত একটি দিন বোঝায়। এখন চাকরি করি না, তাই বলে কি আমার কোনো কর্ম নেই? এ জন্যই আমার প্রতিটি দিবসকে কর্মদিবস মনে করি। প্রতি সপ্তাহের বুধবারে নয়া দিগন্ত পত্রিকায় কলাম লিখি। অতএব, আমার জীবনের ৬৮তম বছরের প্রথম কলামে আমার দৃষ্টিতে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কর্মটি সম্বন্ধে দু’টি কথা বলতে চাই। কলামের সারবস্তু হলোÑ পরিবর্তন। পৃথিবী পরিবর্তনশীল, সমাজ পরিবর্তনশীল, চিন্তা-চেতনা পরিবর্তনশীল, জীবনধারণের প্রক্রিয়া এবং জনগোষ্ঠী বা দেশের কৌশলগত লক্ষ্যবস্তু পরিবর্তনশীল, উন্নয়নের কৌশল পরিবর্তনশীল; সর্বোপরি, পৃথিবী বা দেশের ভৌত কাঠামো পরিবর্তনশীল। যেগুলো পরিবর্তনশীল নয় বলে আমি মনে করি, সেটি হলো একজন মানুষ হিসেবে পৃথিবীতে জীবনযাপনের লক্ষ্য এবং সৃষ্টিকর্তা কর্তৃক প্রদত্ত জীবনযাপন ও আচার-ব্যবহারের মৌলিক নীতিগুলো। যেগুলো পরিবর্তনশীল, সেগুলোর পরিবর্তন যেন ইতিবাচক হয় এবং যেগুলো পরিবর্তনশীল নয়, সেগুলো যেন ইতিবাচকভাবে স্থিতিশীল থাকে, তার জন্য একটি কর্তৃপক্ষ বা গোষ্ঠীকে সচেতন থাকতে হয়। যেমন, পবিত্র কুরআনের ভাষায় সালেহিন (ভিন্ন বানানে সোয়ালেহিন) বান্দাগণ, সামাজিক ভাষায় বুদ্ধিজীবীরা এবং দেশ ও সমাজ পরিচালনাকারী রাজনৈতিক নেতৃত্ব। আমি যেহেতু আট বছর দশ মাস ধরে একজন রাজনৈতিক কর্মী, সেহেতু রাজনৈতিক অঙ্গনের পরিবর্তন নিয়ে দু-চারটি কথা বলছি। আমার মতে, জীবনের ৬৮তম বছরের প্রথম কলামে, পাঠকগণের সাথে শেয়ার করার জন্য এটিই উত্তম বিষয়। ২০০৭ সালের ৪ ডিসেম্বর ঢাকার বঙ্গবন্ধু এভিনিউতে অবস্থিত হোটেল ইম্পেরিয়ালের কনভেনশন সেন্টারে হাজারের অধিক রাজনীতিমনস্ক সমমনা ব্যক্তিদের নিয়ে ৪ ঘণ্টার সম্মেলনের পর বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির উদ্বোধন ঘোষণা করা হয়েছিল। সেই সময় জাতীয় মুদ্রণ ও ইলেকট্রনিক মিডিয়া সংবাদটি প্রচার করেছিল উপযুক্ত মর্যাদা দিয়ে। কিন্তু এ ধরনের সংবাদ এক দিনের বেশি তাৎক্ষণিকভাবে স্থান পায় না। সে দিন কল্যাণ পার্টির উদ্বোধন উপলক্ষে একটি ভাষণ দিতে হয়েছিল। ভাষণটি আমাদের কাছে স্বাভাবিকভাবেই রক্ষিত থাকার কথা এবং আছেও। মানবসভ্যতার বয়স যদি পাঁচ হাজার বছর ধরি, সেই তুলনায় বাংলাদেশ নামক স্বাধীন সার্বভৌম রাষ্ট্রের বয়স ৪৩ বছর, এমন কিছুই না। বাংলাদেশের রাজনীতির বয়স ৪৬-এর সাথে যদি পাকিস্তান আমলের ২৩ বছর যোগ করি অথবা তারও আগের ব্রিটিশ আমলের ২৫ বছর যোগ করি, তাহলেও যে সমষ্টি দাঁড়ায়, সেটাও এমন কিছু না। কিন্তু গত ৬৬ বা ৭০-৮০ বছরে রাজনীতিতে যতটুকু স্বচ্ছতা, গুণগত উৎকর্ষ, জনকল্যাণমুখিতা আসা উচিত ছিল, ততটুকু এসেছে বলে অনেকেই মনে করেন না। অনেক বিদগ্ধ ব্যক্তি মনে করেন, বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তন আবশ্যক। এই পরিবর্তন আনার জন্য অসংখ্য লোকের আগ্রহ যেমন আছে, তেমনি বহু লোক আছেন যারা গুণগত মান নিয়ে চিন্তিত নন। যারা গুণগত পরিবর্তন আনায় আগ্রহী, তারা স্বীকার করেন, বিদ্যমান রাজনৈতিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই সে পরিবর্তন আনতে হবে এবং পরিবর্তনের লক্ষ্যে জনমত সৃষ্টি করার জন্য অব্যাহতভাবে চেষ্টা করতে হবে। জনমত সৃষ্টির ক্ষেত্রে মিডিয়া অত্যন্ত শক্তিশালী ভূমিকা রাখে। ১৯৯৭ সালের জুলাই মাস থেকে শুরু করে পত্রিকায় কলাম লিখছি। তখনকার আমলের ভোরের কাগজ, ইনকিলাব ও জনকণ্ঠ পত্রিকায় লিখেছি। পরবর্তীকালে প্রকাশ হওয়া মাত্রই প্রথম আলো পত্রিকায় লিখতাম। যুগান্তর পত্রিকা প্রকাশ হওয়া মাত্রই ওই পত্রিকায় লিখতাম। ক্রমান্বয়ে ইত্তেফাক এবং অন্য বেশির ভাগ পত্রিকায় লিখেছি। সাম্প্রতিককালে কালের কণ্ঠে, যুগান্তর ও নয়া দিগন্তে বেশি লেখা হচ্ছে। ২০০১ সালের শেষ থেকে স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে যাওয়া-আসা শুরু করি। মূলত এটিএন বাংলা ও চ্যানেল আইতেই বেশি যেতাম। পরবর্তীকালে কম-বেশি প্রায় সব চ্যানেলেই যেতাম; এখনো সাত-আটটি টিভি চ্যানেলে যাওয়া-আসা আছে। পত্রিকার কলামে এবং টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যেহেতু বারবার রাজনৈতিক অঙ্গনে পরিবর্তনের অনুকূলে গুরুত্ব আরোপ করেছি, সেহেতু আমার ওপর নৈতিক চাপ আসে এই মর্মে যে, ‘সুন্দর সুন্দর কথা লেখা ও বলা সহজ, বাস্তবায়ন করা কঠিন। সাহস থাকলে বাস্তবায়নের নিমিত্তে রাজনীতির মাঠে আসুন।’ অনেকটা এ রকম প্রেক্ষাপটেই ২০০৭ সালের ডিসেম্বর মাসের ৪ তারিখ বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির উদ্বোধন ঘোষণা করেছিলাম আমরা। উদ্বোধনী ভাষণেই আমরা ঘোষণা করেছিলাম আমাদের রাজনীতির লক্ষ্য। আমাদের লক্ষ্য ও স্লোগান ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি’ (ইংরেজিতে : পলিটিক্স ফর চেঞ্জ)। আমরা ওই লক্ষ্যেই কাজ করছি। আমি ক্ষুদ্র ব্যক্তি; আমাদের দলটি নিবন্ধিত, কিন্তু এর ব্যাপ্তি সীমিত। আমাদের প্রচেষ্টা ক্ষুদ্র, কিন্তু আমাদের লক্ষ্য মহৎ। ৪ ডিসেম্বর ২০০৭ বেলা ২টার পরে, পরবর্তী ১২-১৪ ঘণ্টায় বাংলাদেশের টেলিভিশন চ্যানেলগুলোতে প্রদর্শিত সংবাদে আমাদের দলের উদ্বোধন ও লক্ষ্যের কথা বলা হয়। কিন্তু আমরা এমন কোনো গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি ছিলাম না যে, আমাদের স্লোগান তাৎক্ষণিকভাবে আকাশে-বাতাসে ঢেউ তুলবে। মাত্র মাসখানেক পর, ৮ জানুয়ারি ২০০৮ সালে যুক্তরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্ট প্রার্থী বারাক ওবামা তার মাতৃভাষায় ঘোষণা করেছিলেন অনেকটা এ রকম শব্দমালা : ‘আমাদের পরিবর্তন প্রয়োজন, আমরা পরিবর্তন আনতে পারি।’ ওবামা খুব সুন্দরভাবে রাজনৈতিক নাটকীয়তায় বললেন- ‘চেঞ্জ উই নিড, চেঞ্জ উই ক্যান।’ কথাটি মিডিয়ার বদৌলতে আর ওবামার ব্যক্তিত্বের ওজনে আমেরিকা ও বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ল। আমরা বলার এক বছর পর, ওবামা বলার ১১ মাস পর বাংলাদেশের রাজনীতিতে সংসদ নির্বাচন হচ্ছিল। শেখ হাসিনা ১২ ডিসেম্বর ২০০৮ সালে শেরাটন হোটেলে ২৪ পাতার নির্বাচনী ইশতেহার পাঠ করেছিলেন। ইশতেহারে তিনি ‘দিনবদলের রাজনীতি’র বিষয়টি আনুষ্ঠানিকভাবে উল্লেখ ও প্রচার করেন। অপরপক্ষে ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ বেগম খালেদা জিয়া নরসিংদী জেলা শহরে অনুষ্ঠিত বিশাল জনসভায় দীর্ঘ বক্তৃতায় আগামী দিনে তার দল তথা জোট ক্ষমতায় গেলে তিনি যে নিয়মে দেশ পরিচালনা করবেন, তার কিছু ইঙ্গিত দিয়েছিলেন। বেগম জিয়া নিজের জবানে বলেছিলেন, ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি, নতুন ধারার রাজনীতি।’ তিনি ৮ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখের আগেও নতুন ধারার রাজনীতির কথা বলেছিলেন এবং ওই তারিখের পরও বিভিন্ন সময়ে এ কথা বলেছেন। আমরা খালেদা জিয়ার এই নতুন ধারার রাজনীতির প্রতি আগ্রহকে আন্তরিকভাবে সম্মান করছি এবং সাফল্য কামনা করছি। আমরা সহযোগিতা করতে চাই। আমাদের রাজনীতিতে পরিবর্তন আনতেই হবে। সে জন্য একটি শুভ সূচনা প্রয়োজন। সেই সূচনা করার জন্য একটি উপযুক্ত উপলক্ষ ছিল ২৯ ডিসেম্বর ২০০৮ তারিখের সংসদ নির্বাচন; কিন্তু সুযোগটির সদ্ব্যবহার হয়নি। আরেকটি উপযুক্ত উপলক্ষ ছিল জানুয়ারি ২০১৪ সালের সংসদ নির্বাচন; সেই সুযোগটিরও সদ্ব্যবহার হয়নি। আরেকটি উপযুক্ত উপলক্ষ হচ্ছে আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচন; সুযোগটির সদ্ব্যবহার হবে কি না জানি না। আগামী নির্বাচন যদি এমন সুন্দরভাবে করা যায়, সেটা পৃথিবীর সামনে একটি উদাহরণতুল্য হয়ে থাকে। তাহলে আমরা মনে করব আমাদের পরিবর্তনের সূচনা হয়েছে। এখনো নিশ্চিত নই যে, আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচন আমাদের কামনা মোতাবেক সুন্দর হবে কি না; কিন্তু চাইতে তো দোষ নেই। যা হোক, যে উপলক্ষগুলোর মাধ্যমে পরিবর্তনের কথা বলছি, সেই পরিবর্তনে অনেক ছোট ছোট উপাত্ত থাকবে। এর দু-একটি মাত্র উল্লেখ করছি। এক নম্বর হচ্ছে, রাজনীতিবিদদের ভাষায় শালীনতা ও শোভনীয়তা থাকতে হবে। জ্যেষ্ঠ রাজনীতিবিদ যারা, তারা যদি নিজেদের ভাষণ-বচন শোভনীয় ও শালীন না করেন, তাহলে কনিষ্ঠগণও না করার আশঙ্কা বেশি। বংশ তুলে, পিতামাতা তুলে, স্বামী-স্ত্রী কিংবা সন্তানসন্ততি তুলে, মুক্তিযুদ্ধকে কেন্দ্র করে অন্যের প্রতি অশোভন ভাষায় গালিগালাজ করা কোনো সমস্যার সমাধান করে না; করবেও না। পৃথিবীতে বেঁচে নেই এমন রাজনৈতিক নেতাদের প্রসঙ্গে অশোভন ভাষায় মন্তব্য ও বক্তব্য একই পর্যায়ে পড়ে। এসব কিছুই পরিহারযোগ্য। দুই নম্বর উপাত্ত হচ্ছে, জিদ ও গোঁয়ার্তুমি পরিহার করা। এ মুহূর্তে সরকারি মহল বলছে, অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দিয়ে দেশ পরিচালনা গণতান্ত্রিক চেতনা ও মর্মের পরিপন্থী। অর্থাৎ, সংশোধিত সংবিধান মোতাবেক বর্তমান ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক সরকারের অধীনেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যেহেতু সংবিধান সংশোধিত হয়েছে, সেহেতু ক্ষমতাসীন দলের মতে, অনির্বাচিত ব্যক্তিদের দিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার গঠন করার আর কোনো সুযোগ নেই। রাজনৈতিক অঙ্গনের বিরোধী শিবির বলছে, একাধিক কারণেই ক্ষমতাসীন দলের এবং ক্ষমতাসীন প্রধানমন্ত্রীর অধীনে সরকার ও দেশ পরিচালনা অব্যাহত রেখে ওই পরিবেশে নির্বাচনে অংশ নিলে নিরপেক্ষ ফলাফল আশা করা অবাস্তব। এখন প্রশ্ন দাঁড়াল, কী নিয়মে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনের বিরোধী শিবিরকে আশ্বস্ত করা যায় যে, আগামী নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। অপর কথায় বলতে গেলে, এই দাঁড়ায়, যেহেতু নিরপেক্ষ সরকারপদ্ধতি এখন বাতিল, তাহলে সরকারি নিরপেক্ষতার পদ্ধতি কী হতে পারে? অথবা অন্য কোনো পদ্ধতি আছে কি না, যার মাধ্যমে বর্তমান সরকারি দল এবং বর্তমান বিরোধী শিবির উভয়ে আগামী পার্লামেন্ট নির্বাচনে মানসিক স্বস্তি নিয়ে অংশগ্রহণ করতে পারে। এটা উদ্ভাবন করতে গেলে অবশ্যই আলোচনা প্রয়োজন। তিন নম্বর উপাত্ত হচ্ছে, আমাদের রাজনীতিকে বর্তমানের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে, ভবিষ্যতের দিকে প্রসারিত করা। অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ- এই তিন কালের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করতে হবে। উন্নত বিশ্বের প্রবণতা হলো, বর্তমান ও ভবিষ্যতের দিকে নজর বেশি দেয়া। আমাদের প্রবণতা, অতীতের দিকে নজর বেশি দেয়া। আমাদের মধ্যে যারা প্রবীণ, তাদের অনেকেরই মনে একটি ধারণা হলো, তারা (প্রবীণগণ) যা মনে করেন, দেশের সব মানুষই মনে হয় সেটাই মনে করেন। আসলে দেশের তরুণ সম্প্রদায়, বহুলাংশেই প্রবীণদের প্রতি আস্থাহীনতায় ভুগছেন। ইতিহাস সম্বন্ধে যতটাই আমরা তরুণদেরকে ‘খাওয়াতে’ চাই, তারা ততটুকু ‘খেতে’ প্রস্তুত নয়। তরুণেরা ক্রমান্বয়ে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক পরিবেশের সাথে পরিচিত হচ্ছে। ৪০ বছর আগে বাংলাদেশের বাইরে যত বাঙালি থাকত, এখন সেই সংখ্যা ২০ গুণ বেড়ে গেছে। অতীতে, ধরুন ৪০ বছর আগে একজন বাঙালি দেশের বাইরে থাকলে এখন ২০ জন বাঙালি দেশের বাইরে থাকেন। বাইরে থাকা বাঙালিদের সাথে, দেশে থাকা বাঙালিদের ইন্টারঅ্যাকশন প্রচুর পরিমাণে বৃদ্ধি পেয়েছে। ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড বা তরঙ্গজগতে কোনো বাউন্ডারি বা সীমান্ত রেখা নেই। এ কারণে বাংলাদেশী তরুণ সম্প্রদায় বিশ্বের অন্য দেশের ও সমাজের তরুণ সম্প্রদায়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বড় হতে চায় এবং এ জন্য সুযোগ চায়। অতএব, আমাদের রাজনীতিতে আগামী দিনের বাংলাদেশের মালিক তরুণ সম্প্রদায়ের চিন্তা-চেতনা ও আশা-আকাক্সক্ষাকে অ্যাকোমোডেট করতে হবে বা স্থান দিতে হবে। চার নম্বর উপাত্ত : পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি বলতে আমরা বোঝাতে চাই, বিভিন্ন পেশার মেধাবী, সাহসী, কর্মঠ দক্ষ আগ্রহী ব্যক্তিগণ যেন রাজনীতি নামক কর্মকাণ্ডে জড়িত হন। ভূগোল থেকে একটি উদাহরণ দিই। ঢাকা মহানগরীর দক্ষিণ দিয়ে প্রবাহিত বুড়িগঙ্গা নদীর পানি এত দূষিত যে, শুষ্ক মওসুমে (নভেম্বর থেকে মে) এই নদীর পানিকে পানি বলা মুশকিল হয়ে যায়, শুধু কালো তরল পদার্থ বললেই চলে। অপর দিকে বর্ষাকালে যখন বৃষ্টি হয়, বৃষ্টির পানির কারণে বুড়িগঙ্গার তরল পদার্থের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়। দূষিত তরল পদার্থের তুলনায় যখন স্বাভাবিক বৃষ্টির ফলে নদীতে পানি বৃদ্ধি পায়, তখন বুড়িগঙ্গার পানিকে আবার পানির মতোই মনে হয়। অর্থাৎ বুড়িগঙ্গার দূষিত তরল পদার্থকে হালকা করতে হলে বাইরের পানি দরকার। তদ্রুপ, বিদ্যমান রাজনৈতিক প্রবাহে যদি উন্নত জীবন দান করতে হয়, তাহলে নতুন মানুষ, নতুন চিন্তা, নতুন মেধার প্রবেশ নিশ্চিত করতে হবে। অর্থাৎ রাজনীতিকে সম্মানজনক করতে হবে। তাহলেই মানুষ রাজনীতি করতে আগ্রহী হবে। ছাত্রজীবনে রাজনীতি করার পর, বড় হলে রাজনীতি করবে, এ কথা যেমন সত্য এবং ভালো, তেমনি সত্য ও ভালো হলো, যারা ছাত্রজীবনে রাজনীতি করেনি, পরবর্তী জীবনে জড়িত হতে চায়, তাদের জন্য দুয়ার উন্মুক্ত রাখতে হবে। আমরা পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি প্রসঙ্গে বলছিলাম। আমরা আমাদের আলোচনা এই মর্মে শেষ করতে চাই যে, উন্নয়নশীল বিশ্বে সামরিক বাহিনী একটি প্রভাবশালী উপাত্ত। বাংলাদেশ সামরিক বাহিনী এর ব্যতিক্রম নয়। বাংলাদেশের রাজনীতিতে সামরিক বাহিনীকে প্রত্যক্ষভাবে জড়িত করা হয় না- এটা যেমন সত্য, আবার পরোক্ষভাবে হাজারবার জড়িত করা হয়, এটাও সত্য। তিন বছর আগের একটি ঘটনা থেকে উদাহরণ দিচ্ছি। বৃহস্পতিবার, ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৩ তারিখের সংবাদ পর্যালোচনা করি। কালের কণ্ঠের ২০ ও ১৩ পৃষ্ঠায় প্রকাশিত সংবাদের দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করছি। প্রধানমন্ত্রী সামরিক বাহিনীর জন্য তার সরকার কী কী করেছে, তার ফিরিস্তি দিয়েছেন সৈনিকদের উদ্দেশে প্রদত্ত বক্তব্যে। সংবাদে প্রকাশ, তিনি বাংলাদেশ ইনফেন্ট্রি রেজিমেন্টের ২০তম ব্যাটালিয়নের (সংক্ষেপে ‘২০ বীর’) প্রশিক্ষণ মাঠে সৈনিকদের দরবার নিচ্ছিলেন। প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেখ হাসিনা সৈনিকদের সামরিক বাহিনীর ব্যবস্থাপনা ও সরঞ্জামাদি প্রসঙ্গে হালনাগাদ তথ্য সরবরাহ করেছেন। এটা তার এখতিয়ারের মধ্যেই পড়ে। কিন্তু যখন প্রধানমন্ত্রী দরবারে বলেন, ‘অন্য কোনো দল নয়, কেবল আওয়ামী লীগই ইসলামের উন্নয়নে ব্যাপক কর্মকাণ্ড পরিচালনা করেছে।’ এটা তার রাজনৈতিক বক্তব্য বলে আমরা মনে করি। এখন সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়া বা বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল ইবরাহিম বীর প্রতীক কী নিয়মে সৈনিকদেরকে বলতে পারেন যে, শেখ হাসিনার সরকার এই ভুলগুলো করেছেন। শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে সুযোগ যেটা নিয়েছেন, সেই সুযোগ আমি নিতে চাই, কিন্তু আমি জানি, সেই সুযোগ পাবো না। না পেলেও প্রধানমন্ত্রীর সমান্তরাল সাবেক প্রধানমন্ত্রী সে সুযোগ পাওয়ার হকদার। কিন্তু বাস্তবতার নিরিখে এটা বলতে পারি, তিনিও পাবেন না। আমার আলোচনার সারমর্ম হচ্ছে- দেশের সব কিছুকে, সব প্রতিষ্ঠানকে রাজনৈতিকভাবে প্রভাবান্বিত করা কি একান্তই প্রয়োজন? ‘পরিবর্তনের জন্য রাজনীতি’ বলতে এটিও বোঝাতে চাই যে- সরকার হোক, বিরোধী দল হোক, নির্মোহ দৃষ্টিতে বক্তব্য রাখতে হবে। লেখক : মেজর জেনারেল (অব:); চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টি ই-মেইল : mgsmibrahim@gmail.com উৎসঃ dailynayadiganta পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 07 Nov, 2016 ৭ নভেম্বর : একটি মূল্যায়ন 01 Nov, 2016 তিনটি শব্দ : বাংলাদেশ জিয়া এবং নভেম্বর 25 Oct, 2016 চীন, বাংলাদেশ এবং আওয়ামী লীগ 11 Oct, 2016 ত্যাগ চাই, মর্সিয়া ক্রন্দন চাই না 27 Sep, 2016 তরুণদের অনুভূতি নিয়ে আলোচনা 06 Sep, 2016 জনগণকে জানাতে চাই : প্রসঙ্গ পার্বত্য চট্টগ্রাম-৪ 03 Sep, 2016 জনগণকে জানাতে চাই : প্রসঙ্গ পার্বত্য চট্টগ্রাম-৩ 02 Sep, 2016 জনগণকে জানাতে চাই : প্রসঙ্গ পার্বত্য চট্টগ্রাম-২ 30 Aug, 2016 জনগণকে জানাতে চাই : প্রসঙ্গ পার্বত্য চট্টগ্রাম-১ 23 Aug, 2016 ২০ দলীয় জোটের সাম্প্রতিক রাজনীতি 16 Aug, 2016 পার্লামেন্ট নির্বাচন এবং আনুষঙ্গিক বিষয় 09 Aug, 2016 জুম্মল্যান্ডের অজানা গল্প এবং সামারি 09 Aug, 2016 জুম্মল্যান্ডের অজানা গল্প এবং সামারি 02 Aug, 2016 আমার প্রতি বারবার একই প্রশ্ন-২ 26 Jul, 2016 আমার প্রতি বারবার একই প্রশ্ন 19 Jul, 2016 ইহুদি মহাজন শাইলকের গল্প; কিন্তু কেন? 28 Jun, 2016 রাজনৈতিক চিন্তাভাবনা, আশা-হতাশা 21 Jun, 2016 তিনটি দিবস : বদর, পলাশী এবং আওয়ামী লীগ প্রতিষ্ঠা 15 Jun, 2016 আমার-আপনার পরিচয় এবং উপলব্ধি 08 Jun, 2016 ইউপি নির্বাচনের আংশিক মূল্যায়ন 24 May, 2016 জিয়াউর রহমান : শাহাদতের প্রেক্ষাপট এবং আনুষঙ্গিক কথা 18 May, 2016 মুক্তিযোদ্ধা আশরাফ আলী দেওয়ানের নীতি ও স্বপ্ন 27 Apr, 2016 আন্দোলন, ইউপি নির্বাচন এবং তৃণমূল নেতৃত্ব 13 Apr, 2016 রাজার হস্ত করে সমস্ত কাঙালের ধন চুরি 29 Mar, 2016 জিয়াউর রহমান, মুক্তিযুদ্ধ ও গণতন্ত্র Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: লিভার পরিষ্কার করবে যে ৫টি খাবার Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য লিভার পরিষ্কার করবে যে ৫টি খাবার 02 Oct, 2016 লিভার দেহের অন্যতম বৃহতম অঙ্গ এবং একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির লিভারের ওজন প্রায় ৩ পাউন্ড। হজম শক্তি, মেটাবলিজম, রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি, পুষ্টি যোগান ইত্যাদি নানান কাজ করে থাকে লিভার। দেহের রক্ত প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ, রক্ত থেকে টক্সিন পর্দাথ দূর, দেহের বিভিন্ন অংশে পুষ্টি যোগানো ছাড়াও লিভার ভিটামিন, আয়রন এবং গ্লুকোজ সংরক্ষণ করে। লিভার শরীর সুস্থ রাখতে অনেকগুলো কাজ করে থাকে। তাই এটি সুস্থ রাখা বেশি প্রয়োজন। অস্বাস্থ্যকর জীবনযাত্রা, অতিরিক্ত পরিশ্রম লিভারকে অসুস্থ করে তোলে। লিভার পরিষ্কার রাখবে এমন কিছু খাবার নিয়ে আজকের এই ফিচার। ১। রসুন লিভার পরিষ্কার রাখার অন্যতম একটি খাবার হল রসুন। এর এনজাইম লিভার থেকে টক্সিন পর্দাথ দূর করে দেয়। এছাড়া অ্যালিসিন এবং সেলেনিয়াম নামক উপাদান যা লিভার পরিষ্কার রাখে এবং ক্ষতিকর টক্সিক উপাদান হতে রক্ষা করে। প্রতিদিন দুই-তিনটি রসুনের কোয়া খাওয়ার অভ্যাস করুন। এছাড়া ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে রসুন দিয়ে তৈরি ভিটামিনও খেতে পারেন। ২। জাম্বুরা জাম্বুরায় প্রচুর পরিমাণ ভিটামিন সি, প্যাকটিন এবং অ্যান্টি অক্সিডেন্ট রয়েছে যা লিভার প্রাকৃতিক ভাবে পরিষ্কার করে। প্রতিদিন এক গ্লাস জাম্বুরার রস পান করুন অথবা জাম্বুরা ফলটি খাবারের সাথে রাখুন। ৩। আপেল প্রতিদিন একটি আপেল খাদ্য তালিকায় রাখুন যা লিভারকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে। আপেলের উপাদান দেহের পরিপাক নালী হতে টক্সিন ও রক্ত হতে কোলেস্টরোল দূর করে এবং সাথে সাথে লিভারকেও সুস্থ রাখে। আপেলে আছে আরও কিছু উপাদান- ম্যালিক এসিড যা প্রাকৃতিক ভাবে রক্ত হতে ক্ষতিকর টক্সিন দূর করে। যেকোন ধরণের আপেলই দেহের লিভারের জন্য ভালো। ৪। বিট বিট আরেকটি শক্তিশালী খাবার যা লিভার পরিষ্কার করে থাকে। ফ্ল্যাভোনয়েড এবং বিটা কারটিন উপাদান সম্পূর্ণ লিভার সুস্থ রাখতে সাহায্য করে। প্রতিদিনের খাদ্য তালিকায় এক গ্লাস বিটের রস রাখুন। এছাড়া এক কাপ বিটের কুচির সাথে দুই টেবিল চামচ অলিভ অয়েল এবং অর্ধেকটা লেবুর রস মেশান। এটি দুই চা চামচ করে দুই ঘন্টা পর পর পান করুন। ৫। গ্রিন টি গ্রিন টি শরীর থেকে টক্সিন এবং ক্ষতিকর ফ্যাট বের করে দিয়ে শরীর হাইড্রেইড করে থাকে। ২০০৯ সালের গবেষণা অনুযায়ী যারা নিয়মিত গ্রিন টি পান করেন তাদের ক্যান্সার হওয়ার ঝুঁকি অনেকাংশ কমে যায়। প্রতিদিন দুই থেকে তিন কাপ গ্রিন টি পান করুন। ডায়াবেটিসের সমস্যা না থাকলে এর সাথে মধু মেশাতে পারেন। প্রিয় প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 10 Oct, 2015 দক্ষিণ এশিয়ায় জমজমাট কিডনি ব্যবসা! 05 Sep, 2015 অর্থলোভে অহেতুক অস্ত্রোপচার 04 Jul, 2015 ঘুষ দিন, সেবা নিন 06 Nov, 2016 পান সুপারিতে মুখের ক্যান্সার : সচেতনতায় লন্ডনের বাঙালী পাড়ায় সরকারী প্রচারাভিযান 26 Aug, 2016 বড়দের ওষুধ খাচ্ছে শিশুরা 07 Aug, 2016 রেডিয়েশনের ক্যান্সার ঝুঁকিতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ! 22 Jun, 2016 বোমা তৈরির সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেক বিস্কুট 21 Jun, 2016 অ্যাসিড ও কাপড়ের রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কোমল পানীয়! 28 Apr, 2016 সাবধান, লিচুতে নতুন ভাইরাস 22 Apr, 2016 সেবা নয়, বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে বারডেম হাসপাতাল 09 Apr, 2016 শিশুখাদ্যে প্লাস্টিক: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভবিষ্যত! 09 Apr, 2016 দেশের শতভাগ মিষ্টি, ৭৫ ভাগ সয়াবিন তেলে ভেজাল 09 Apr, 2016 ১০ টাকার ডাক্তার! 16 Feb, 2016 শেকৃবিতে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উদ্ভিদ 07 Feb, 2016 বাংলাদেশেও ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্মাতে পারে 04 Feb, 2016 শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে, কারণ ফাস্টফুড 03 Feb, 2016 প্রতিবন্ধিত্বের ৩ শতাংশই ভুল চিকিৎসায় 01 Feb, 2016 দেশে নতুন রোগের প্রকোপ 27 Jan, 2016 সাবধান! মাছ-মুরগির খাদ্যে ক্যানসারের বীজ 27 Jan, 2016 ভয়ানক এক রোগে আক্রান্ত দেশের লাখো টিন এজার, যুবক-যুবতী ! 27 Jan, 2016 মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া >>শাকসবজিও নিরাপদ নয়! 26 Jan, 2016 পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে যে ৭৫ হাসপাতাল 21 Jan, 2016 পাউরুটিতে জেলির নামে এ কী ব্যবহার হচ্ছে ! 16 Jan, 2016 বিষাক্ত কয়েলের ধোঁয়ায় কমছে প্রজনন ক্ষমতা 16 Jan, 2016 নেত্রকোনার অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু,আক্রান্ত অনেকে 28 Dec, 2015 ভিডিও >> অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত 24 Dec, 2015 অ্যান্টিবায়োটিক ‘নেশা’ ঘরে-ঘরে 20 Dec, 2015 মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দামি খাবার দেশে! 17 Dec, 2015 ‘মানবিক ভুল!’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই অজুহাত আর কতদিন? 06 Dec, 2015 ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ, খুলে দেয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: অন্যের সোহাগে নিবেদন করা যায় না সবকিছু Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম মিনার রশীদ minarrashid@yahoo.com অন্যের সোহাগে নিবেদন করা যায় না সবকিছু 18 May 2016, Wednesday যাকে বলে একেবারে হাটে হাঁড়ি ভাঙা। সেই কাজ দুটিই করেছেন ভারতের দুজন নারী। এই নারীদের একজন একটি বই লিখেছেন এবং অন্যজন প্রাক্তন স্বামীর বিরুদ্ধে মামলা ঠুকেছেন। উভয়ের অভিযোগ দুটিই গুরুতর। অনেকটা খোলামেলা কামসূত্রের দেশ ভারতীয় সমাজও বিষয়টিকে সহজভাবে গ্রহন করছে না। নিজের বউকে শুধু জোর করে অন্য কেউ নিগ্রহ করলেই নয়, বিশেষ চুক্তি বা আন্ডারস্টেন্ডিংয়ের আওতায় সোহাগ করলেও তা মানা যায় না। রক্ত তখন শুধু মাথাতেই উঠে না, সেই রক্ত পারলে মাথার উপরে চুলের মধ্যেও ঢুকে পড়তে চায়। সেই ধরনের কাজ যখন পরস্পরের সম্মতিতে ঘটে যায় তখন তা সামাজিক বিকৃতি ও নৈতিক পদস্খলনের চূড়ান্ত অবস্থা নির্দেশ করে। এই বিকৃতি মানব সমাজের সবচেয়ে পুরনো প্রতিষ্ঠান বিয়ে ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দেয়। এই অভিযোগটি করেছেন ভারতীয় নৌবাহিনীর এক অফিসারের প্রাক্তন স্ত্রী। তিনি অভিযোগ করেছেন যে স্বামী তাকে দিয়ে ওয়াইফ সোয়াপিং বা বউ অদলবদল কাজে জোর করে অংশগ্রহন করিয়েছেন। অনুমিত হচ্ছে, দাম্পত্যজীবনের এক ঘেয়েমি দূর করতে গিয়ে যে বিকৃত পন্থার তারা শরণাপন্ন হয়েছিলেন, তাতেও এক সময় একঘেয়েমি ধরে গিয়েছিল বলেই এই বিচ্ছেদ সকলের গোচরীভূত হয়েছে। ভারতীয় মহিলা ফুটবল দলের প্রাক্তন ক্যাপ্টেন সোনা চৌধুরী তার সদ্য প্রকাশিত গ্রন্থ ‘গেইম ইন গেইম’ এ একই ধরনের আরেকটি বোমা ফাটিয়েছেন। যোগ্যতা বা প্রতিভা যাই থাকুক না কেন, কর্তা ব্যক্তিদের নারীত্বের এই বিশেষ সম্পদটি ঘুষ হিসেবে না দিলে কোনো মেয়েই নাকি ভারতের কোনো স্তরে খেলার সুযোগ পান না। বিষয়টি কেন এত জটিল হয়ে পড়েছে তা উপলব্ধি করতে বেগ পেতে হয় না। কারণ ১০ পয়েন্ট নিয়ে কোন সতী সাধ্বী রাজি না হলে ৯.৯ পয়েন্ট নিয়ে আরো অনেকেই দাঁড়িয়ে আছেন। কারণ বর্তমান বস্তুবাদী বা ভোগবাদী সামাজিক কাঠামো শুধু অনেক নারীলোভী পরিমলই সৃষ্টি করেনি, অনেক নম্বরলোভী ছাত্রীও সৃষ্টি করেছে। নারী স্বাধীনতার নাম নিয়ে এরা নারীকে বা নারীত্বকে আরো কঠিন ও ভয়ঙ্কর জিঞ্জিরে আবদ্ধ করে ফেলেছে। যারা আবদ্ধ হচ্ছেন, তারাও এই জিঞ্জিরটির অস্তিত্ব সম্যক উপলব্ধি করতে পারেন না। এরা বর্তমান ঝলমলে মার্কেট ইকোনোমি বা কলি কালের দেবদাসী। পুরুষতন্ত্রের এই চক্কর থেকে বের হওয়া নারীদের জন্য আসলেই কঠিন। নারীবাদীরাও আজব ভূমিকা পালন করে চলেছে। বাম এবং অন্য সকল দিকের পুরুষতন্ত্রকে ছেড়ে দিয়ে কিংবা নিজেরাই পুষ্ট করে শুধু ডান দিকের পুরুষতন্ত্রের দিকেই এরা নিজেদের আক্রমণাত্মক কামানটি তাক করে রেখেছে। ‘খেলার মধ্যে আরেক খেলা’ গ্রন্থের এই লেখিকা নিজেও একজন খেলোয়াড়, একই পথের যাত্রী। দেখতে শুনতে অত্যন্ত স্মার্ট এবং সুন্দরীও বটে। এই কারণেই এই সংবাদটি বিশেষ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে। একজন চিত্রনায়িকা যখন সুগার ডেডি বা চিনি বাবা হিসাবে চিত্র প্রযোজক বা পরিচালকদের কীর্তির কথা প্রকাশ করেন, তখন তা থেকে নিজেকেও বোধ হয় বাদ রাখেন না। কাজেই অনুমিত হয় যে নিজের হাতে যথেষ্ঠ প্রমাণ এবং সাপোর্টিং ডকুমেন্ট মজুদ না করে সোনা চৌধুরী এই সোনার জিঞ্জিরটি বিশ্ববাসীর সম্মুখে উন্মুক্ত করেননি। এই দুটি সাড়াজাগানো অভিযোগের পর একই কিছিমের দাম্পত্য টানাটানির অনুরূপ তিন নম্বর উক্তিটি করেছেন ভারতের পররাষ্ট্র সচিব। তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে অন্য কারো নাক গলানোকে ভারত বরদাস্ত করবে না। কোন অথরিটি নিয়ে ভারত আমাদের হয়ে অন্যদের শাসান, তা অনেককে গোলক ধাঁধায় ফেলে দিয়েছে। পাকিস্তান ও তুরস্ক আমাদের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে নাক গলিয়ে আমাদের বিক্ষুব্ধ করেছে। তার বিপরীতে ভারত আমাদের দেশের প্রতি এ কোন সোহাগ দেখাচ্ছে? নিজের বউ আর নিজের দেশ- এ দুটি জিনিস অন্যের সোহাগে নিবেদন করা যায় না। মানবতা বিষয়টিকে কোনো ভৌগোলিক সীমার মধ্যে আবদ্ধ রাখা যায় না। কাজেই পৃথিবীর কোথাও এই মানবতা বিঘ্নিত হলে অন্য জায়গা থেকে উদ্বেগ, উৎকণ্ঠা ভেসে ওঠে। মাওলানা নিজামীর মুত্যুদণ্ডের ব্যাপারে পাকিস্তান ও তুরস্ক যে কথা বলেছে সেই একই বিষয় নিয়ে জাতিসঙ্ঘ, অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল, হিউম্যান রাইটস ওয়াচ এবং যুক্তরাষ্ট্র মুখ খুলেছে। তন্মধ্যে সরকার শুধু পাকিস্তানকে নিয়েই প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে। বাকিদের উদ্বেগ, উৎকণ্ঠাকে মনে হয় নীরবে হজম করে গেছে। তবে বন্ধু ভারত আমাদের হয়ে সকলকে লক্ষ্য করে এই হুঁশিয়ারিটুকু উচ্চারণ করেছে। আমাদের দেশের প্রতি ভারতের এই সোহাগ দেখে চরম কষ্টের মাঝেও পরলোকগত শ্যামসুন্দর বৈষ্ণব ও শেফালী ঘোষের দ্বৈত কণ্ঠে গাওয়া গানটির কথা মনে পড়ে যাচ্ছে। শ্যামসুন্দর গিয়েছিলেন (চিটাগাং এর আঞ্চলিক থেকে বাংলানুবাদ ), আমার বউরে আমি কিলামু, আমি খাওয়ামু তুই তাতে নাক গলাস কেন? তেমনি ভারত আমাদের ‘কিলাইতেও’ পারবে, ‘খাওয়াইতেও’ পারবে। তাতে অন্যরা নাক গলাতে পারবে না। ভারতের সুর ও বডি ল্যাঙ্গুয়েজ হুবহু একই রকম। আমরা শুধু শ্যাম সুন্দরের পাশে থেকে শেফালী ঘোষের সুর ও ভঙ্গিতে আঙুল উচিয়ে মাঝে মাঝে বলব, হ্যাঁ হ্যাঁ- তুই তাতে নাক গলাস কেন? একাত্তরে তারা আমাদেরকে অনেক ভাত খাইয়েছেন। কাজেই এখন কিলানোর অধিকার জন্মেছে। সেই অধিকার থেকেই আমাদের সব নদীর পানি প্রত্যাহার করে দেশটাকে মরুভূমি বানিয়ে ফেলেছে। আমাদের ভূ-রাজনৈতিক সুবিধাগুলোকে একে একে চূর্ণ বিচূর্ণ করে রাজনীতি ও অর্থনীতির সব নিয়ন্ত্রণ করায়ত্ত করে ফেলেছে। এদেশে যতটুকু গণতন্ত্র ছিল সেটুকুও ধ্বংস করেছে। সবচেয়ে বড় কথা ডিভাইড এন্ড রুলের উদ্দেশ্যে সিঙ্গেল ইউনিটের চমৎকার জাতি রাষ্ট্রটিকে সর্বনাশাভাবে বিভক্ত করে ফেলেছে। তিক্ততা ও বিভক্তির বীজ রোপণ করে তার ফসলও ঘরে তুলেছে। এতে আমাদের চরম ক্ষতি হলেও পরিণাম ফল ভারতের জন্যও শুভ হবে বলে মনে হয় না। ভারত তার চতুর্দিকে শত্রু না কমিয়ে বাড়িয়ে তুলছে। দেশটির জন্য সবচেয়ে মঙ্গলজনক হবে প্রতিবেশীর মনের চাপা ক্ষোভটি উপলব্ধি করা। কোনো কিছু চেপে রাখলে প্রকৃতির নিয়ম অনুসারে তা রিলিজ হওয়ার উপায় খুঁজবেই। যত বড় শক্তিই হোক না কেন, প্রকৃতির বিরুদ্ধাচরণ করে কেউ টিকে থাকতে পারে না। বিকল্প শক্তি দাঁড়িয়ে পড়বেই। একটা দেশের সাথে সম্পর্ক উন্নয়ন না করে একটা দলের সাথে সম্পর্ক করে ভারত তার নিজের বিপদটিই কি টেনে আনছে না? ভারতের আশীর্বাদপুষ্ট দলটির প্রতি দেশের মানুষের আস্থা আগের চেয়ে অনেক কমে গেছে। দলটি এসেট না হয়ে অচিরেই লায়াবেলিটিজ হয়ে পড়তে পারে। অনেকের ধারণা এই চিন্তা থেকেই গণজাগরণ মঞ্চের ডা: ইমরানকে বিকল্প হিসেবে তৈরি করা হচ্ছে। গণমানুষের উদ্বেগ ও হতাশা ইমরানের মুখ দিয়ে বলানো হচ্ছে। তবে তাতেও কি শেষ রক্ষা হবে? একটা দেশের সাথে অন্য দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক বৈধ। কিন্তু একটা দেশের সাথে অন্য দেশের বিশেষ দলের বিশেষ সম্পর্ক অবৈধ। ভারতের এই ভুল নীতি তাকে প্রতিটি প্রতিবেশী থেকে দূরে সরিয়ে রেখেছে। ইন্ডিয়ার করুণার কাছে বন্দী রাজ্য হিসেবে একসময় বিবেচিত ল্যান্ড লক্ড নেপালেও ভারতের এই পলিসি উল্টো ফল দিয়েছে। নেপাল এখন ভারতের স্বার্থের বিপরীতে গিয়ে চীনের সাথে নতুন করে সম্পর্ক স্থাপন করেছে। বাংলাদেশকে নিয়ে ভারতের নতুন খেলা বুমেরাং হয়ে পড়তে পারে। ভারতের জাতপাতের কষাঘাতে এক তৃতীয়াংশ জায়গা জুড়ে নকশাল আন্দোলন দানা বেঁধেছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এটাকে ভারতের জন্য পাকিস্তানের চেয়েও বড় হুমকি বলে উল্লেখ করেছিলেন। মুসলিম অধ্যুষিত বাংলাদেশকে নিয়ে নতুন খেলাকে ভারতের ভেতরের ৩০-৩৫ কোটি মুসলিম ভালোভাবে গ্রহণ করবে কি? বাংলাদেশ ভারতের উপনিবেশে পরিণত হয়েছে- এই ধরনের কথা ইন্ডিয়ার অনেক মুসলিম নেতা বলাবলি শুরু করেছেন। বর্তমান পরিস্থিতি চলতে থাকলে এই ধারণাটি আরো বড় পরিসরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। বাংলাদেশকে নিয়ে কোনো যুদ্ধের পরিস্থিতি পুরো উপমহাদেশকেই নতুন করে অস্থির করে তুলবে আর তাতে ভারতের ক্ষতিটিই বেশি হতে পারে। অতি চালাকের গলায় দড়ি- সেই কথাটি তখন দিল্লির জন্য সত্য হয়ে পড়তে পারে। এ দেশের শান্তিকামী মানুষ সবার সাথে শান্তিতে থাকতে চায়। কোনো প্রতিবেশীর সাথেই কোনোরূপ অশান্তি জিইয়ে রাখতে চায় না। সার্বিক বিবেচনায় ভারতের জন্যও নিরাপদ হলো- সত্যিকার অর্থেই একটি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ। গণতান্ত্রিক সেই বাংলাদেশের সাথে বোঝাপড়ার মাধ্যমেই এই এলাকার মানুষের জন্য একটি কল্যাণকর দক্ষিণ এশিয়া গড়া সম্ভব। কোনোরূপ চালাকির মাধ্যমে এটি অর্জন সম্ভব হবে না। এ ব্যাপারে বড় প্রতিবেশি দেশটি এক পা এগিয়ে এলে এ দেশের মানুষ দুই পা এগিয়ে যাবে। minarrashid@yahoo.com উৎসঃ dailynayadiganta পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 10 May, 2016 বউ শাশুড়ির কাইজ্জা এবং রাজনীতির মরিচ চিকিৎসা 03 May, 2016 বুদ্ধিবৃত্তিক বিপদসীমা এবং আজকের বিপদ 19 Apr, 2016 যার জন্য করলাম বাটপাড়ি, সেই বলে বাটপাড় 13 Apr, 2016 আব্দুল আলীর শহর ও আবুলদের বিশ্ব জয় 06 Apr, 2016 ‘বংশতন্ত্র’ কতটুকু খারাপ কতটা অপরিহার্য? 22 Mar, 2016 ‘চুরি হয়ে গেছে রাজকোষে’ 15 Mar, 2016 শুঁটকির বাজারে বিড়াল চৌকিদার! 09 Mar, 2016 প্রেয়সীর তিলটির জন্য ঢাকা চিটাগাং রাজশাহী খুলনা 01 Mar, 2016 গোপাল ভাঁড়, এক- এগারো ও মিডিয়া 25 Jan, 2016 ধামা দিয়ে চাপা দেয়া দু’টি ঐতিহাসিক সত্য 18 Oct, 2015 মৃত্যুদণ্ডের পক্ষে-বিপক্ষে : শফিক রেহমান বনাম গাফফার চৌধুরী 15 Sep, 2015 সানি লিয়ন এবং রেহমান সোবহানের ‘জার্নি টু বাংলাদেশ’ 04 Sep, 2015 মার্কিন জরিপের মলাটে ভরে অন্যের উপহার! 29 Aug, 2015 ধর্মের কল বাতাস ছাড়াও নড়ে 12 Aug, 2015 আসল বিএনপির সন্ধানে 22 Jul, 2015 লাখের বাতি ও নিম্নমধ্য আয়ের ক্যারেশমাতি 12 Jul, 2015 একটি জাতির আত্মহত্যার মহড়া 26 Jun, 2015 মৌলবাদের ‘অ্যালংসাইডে’ উৎফুল্ল এরা কারা? 20 May, 2015 ভাসমান মানুষ, ফুটন্ত ফানুস ও ডুবন্ত মানবতা 13 May, 2015 ‘হেয়ার রিমুভার’ ও ‘দাগ রিমুভার’ 27 Apr, 2015 হেই ভগবান! একটা পোকা যাস পেটে ওর ঢুকে! 24 Apr, 2015 লা খোয়ানো ঝুড়ি আর বস্ত্র খোয়ানো নারী 17 Apr, 2015 ‘মুই কার খালু’ ও কাত হওয়া জাহাজ 16 Apr, 2015 ‘বিশ্বদরবার’ এবং পাহলোয়ানদের গণতন্ত্র 23 Mar, 2015 বোকা হ্যাকার, কনফিডেন্ট শশী থারুর ও অভিমানী লোটাস কামাল Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: পরিবেশ ধ্বংসও এখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফারুক ওয়াসিফ farukwasif@yahoo.com পরিবেশ ধ্বংসও এখন মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ 04 October 2016, Tuesday জি, ঘটনা এমনই দাঁড়াচ্ছে। বন ধ্বংস করবেন, নদী নষ্ট করবেন, কৃষিজমিকে বদলে ফেলবেন—আর বলবেন উন্নয়ন হচ্ছে, সেটি আর হচ্ছে না। আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালত (আইসিসি) এখন পরিবেশ ধ্বংসকেও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবে দেখা শুরু করেছে। পরিবেশ ধ্বংস ও ভূমি দখলের হোতাদের বিচারের জন্য নেদারল্যান্ডসের হেগে অবস্থিত এই আদালতের দরজা এখন খোলা।কাজেই স্যুট পরা কথিত ‘ভালো’ লোকদেরও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের কাঠগড়ায় দাঁড়াতে হতে পারে। প্রথমবারের মতো পৃথিবীর সর্বোচ্চ অপরাধ আদালত প্রকৃতি ধ্বংস ও ভূমি দখলকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধের তালিকাভুক্ত করছে (নিউইয়র্ক টাইমস, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬)। এ​ই সে​েপ্টম্বরে আইসিসির প্রসিকিউটরের দপ্তর থেকে প্রকাশিত কৌশলপত্রে বিষয়টা পরিষ্কার করা হয়েছে। কৌশলপত্রের ‘মামলা বাছাই ও অগ্রাধিকারকরণ’ অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, কোনো রাষ্ট্র চাইলে আন্তর্জাতিক আইনের অধীনে প্রাকৃতিক সম্পদের বেআইনি আত্মসাৎ, ভূমি দখল অথবা পরিবেশ ধ্বংসের বিচারে আইসিসি সহযোগিতা দেবে। (http://preview.tinyurl.com/h6usdfu)। আইসিসির এই সিদ্ধান্তের পেছনেও গণ–আন্দোলনের ইতিহাস আছে। কম্বোডিয়ার কিছু মানুষ আইসিসিতে একটি মামলা দায়ের করেন। তাঁদের অভিযোগ, ২০০২ সাল থেকে কম্বোডিয়ার সরকার, সামরিক বাহিনী, পুলিশ এবং আদালত সেখানকার ৩ লাখেরও বেশি মানুষকে বলপূর্বক উচ্ছেদ করে আসছে। অনুরূপ ঘটনা বাংলাদেশেও ঘটতে যাচ্ছিল ২০০৬ সালে। দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে একটি বিদেশি কোম্পানির মাধ্যমে বিপজ্জনক উন্মুক্ত পদ্ধতিতে কয়লাখনি করার জন্য প্রায় ২ লাখ মানুষ উচ্ছেদের শিকার হতে যাচ্ছিল। অবশ্য স্থানীয়দের রক্তক্ষয়ী আন্দোলন তৎকালীন বিএনপি সরকারকে পিছু হটতে বাধ্য করে। মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধী বলতে এত দিন আমরা যুদ্ধাপরাধ, গণহত্যা, মানব ও মাদক পাচারকারীদের বুঝতাম। এগুলো চিহ্নিত অপরাধ। এগুলোর পক্ষে সাফাই গাওয়াও কঠিন। কিন্তু যাঁদের হাতে রক্তের দাগ নেই, যাঁরা নিজ হাতে একটি টিকটিকিও হয়তো হত্যা করেননি, তাঁদের অপরাধ ধরা কঠিন। যুদ্ধে নিরীহ মানুষকে হত্যা কিংবা যুদ্ধের নিয়ম ভঙ্গ করাকে যুদ্ধাপরাধ বলে। কিন্তু করপোরেট কোম্পানির প্রধান নির্বাহী অথবা সরকারি ক্ষমতার অধিকারীদের কলমের এক খোঁচায় পৃথিবীর ভয়ানক ক্ষতি হয়ে যেতে পারে। ক্ষতি হয়ে যেতে পারে জনগণের এবং পরিবেশের অস্তিত্বের। প্রায়ই এমন ব্যক্তিরা বিচারের ঊর্ধ্বে থেকে তো যানই, উল্টো তাঁদের উন্নয়নের বীরও বলা হয়। তাঁরা ভোগ করেন ভিভিআইপি, সিআইপির মর্যাদা। কোনো বড় কোম্পানির সিইও অথবা সরকারের কোনো সচিব বা মন্ত্রী এমন সিদ্ধান্ত নিলেন, যার ফলে বড় আকারের পরিবেশ ধ্বংস হলো। কিংবা ভূমি থেকে উচ্ছেদ হলো অনেক মানুষ। এসব কর্মকাণ্ডকে মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ বলার আইনি রাস্তা আগে ছিল না। আইসিসি তার পথ দেখাল। আইসিসির প্রসিকিউটর ফাতু বেনসোদা জানাচ্ছেন, ‘আমরা শুধু অপরাধের প্রতি নজরপাতের এলাকা বড় করছি, আমরা দেখতে চাইছি বৃহত্তর প্রেক্ষিত থেকে।’ (নিউইয়র্ক টাইমস, ২৯ সেপ্টেম্বর, ২০১৬)। উল্লেখ্য, ব্যক্তি থেকে সরকার, সবাই এই বিচারের আওতায় পড়বেন। ইতিমধ্যে পেরুর সাবেক প্রেসিডে​ন্ট ফুজিমোরিকে পরিবেশ ধ্বংসের দায়ে আইসি​সিতে নেওয়ার চেষ্টা হয়েছিল। কিন্তু তাঁর অপকর্ম আইসিসি প্রতিষ্ঠার (২০০২) আগের হওয়ায় আপাতত তা সম্ভব হচ্ছে না। তবে ইকুয়েডরের বন ধ্বংসের বিচারের আরজি ইতিমধ্যে আইসিসির কাছে অাছে। অনেক দেশের আইনেই পরিবেশ ধ্বংস কিংবা মানুষকে তঁার জমি-বসতি থেকে উচ্ছেদ করার পথ কৌশলে খোলা রাখা হয়। রাজনীতিবিদেরা উন্নয়নের ভুল চিন্তা থেকে কিংবা নিরেট দুর্নীতির বশে এমন কাজ করে ফেলেন, যার দায় প্রজন্ম থেকে প্রজন্মকে শুধতে হয়। আইসিসির নতুন সিদ্ধান্তের পর কোম্পানির নির্বাহী, বিনিয়োগকারী অথবা সরকারগুলোর প্রতি হুঁশিয়ারি গেল, পরিবেশ নিয়ে লীলাখেলা করায় বিপদ আছে। তবে এখনই আইসিসি পরিবেশ অথবা ভূমি দখলের হোতাদের ধরে ধরে বিচার করতে যাচ্ছে না। কোনো দেশ যদি চায়, তাহলে তারা এমন অপরাধের বিচারে সহযোগিতা করবে। কোনো দেশ না চাইলে কিংবা অপারগ হলেও কথা থাকবে। জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অথবা কোনো সদস্যরাষ্ট্রের অনুরোধে আইসিসি এসব অপরাধের তদন্ত করতে পারবে। এর অর্থ, দেশীয় আইনে বিচার সম্ভব না হলেও ১৯৯৯ সালের রোম স্ট্যাটিউটে স্বাক্ষরকারী দেশগুলোর ওপর আইসিসির শর্ত বর্তাবে। বাংলাদেশ রোম ঘোষণায় স্বাক্ষরকারী প্রথম দেশগুলোর একটি। ২০০৩ সালে জাতীয় সংসদের মাধ্যমে তা অনুস্বাক্ষরিত বা র‍্যাটিফাইও করা হয়েছে। সুতরাং বাংলাদেশ সরকার বা এ দেশের কোনো ব্যক্তি আন্তর্জাতিক আদালতে বাংলাদেশে সংঘটিত এ ধরনের অপরাধের বিচার দাবি করতে পারবেন। ভারত, চীন ও ইন্দোনেশিয়া এখনো এই ঘোষণায় স্বাক্ষর করেনি। শুধু পরিবেশ ও ভূমি দখল নয়, সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বিশ্ব ঐতিহ্য হিসেবে চিহ্নিত প্রত্নসম্পদের ক্ষতিও মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ হিসেবেই দেখছে আইসিসি। ইতিমধ্যে একজনের বিচারও হয়েছে এই অপরাধে। ২০১২ সালে মালের জঙ্গিনেতা আহমাদ আল-মাহদি জাতিসংঘের বিশ্ব ঐতিহ্য-ঘোষিত টিমবাকটুর ঐতিহাসিক সৌধগুলো ধ্বংস করে বেশ গর্ব করেছিলেন। হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদালতে তাঁকে যুদ্ধাপরাধী হিসেবে সাব্যস্ত করলেন। (দেখুন: http://tinyurl.com/hysqxsn) তাঁর নয় বছরের কারাদণ্ড হয়। আইসিসিকে বলা যায় জাতিসংঘের আদালত। জাতিসংঘের সমর্থনের ওপরই নির্ভর করছে এর কার্যকারিতা। জাতিসংঘের সংস্থা ইউনেসকো সম্প্রতি বিশ্ব ঐতিহ্য-ঘোষিত সুন্দরবনের কোল ঘেঁষে রামপালে কয়লাভিত্তিক বিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে আপত্তি জানিয়েছে। ইউনেসকোসহ বাংলাদেশের বিশেষজ্ঞ ও নাগরিকদের বড় অংশই মনে করে, এই বিদ্যুৎকেন্দ্র সুন্দরবনের অস্তি​েত্বর জন্য মারাত্মক হুমকি। তাই প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্ব ঐতিহ্যের পাশাপাশি প্রাকৃতিক বিশ্ব ঐতিহ্যের ক্ষতির প্রশ্নটি নতুন করে ভাবা দরকার। ইতিমধ্যে পাকিস্তানের লাহোরের প্রস্তাবিত মেট্রোলাইন নির্মাণ আটকে দিয়েছেন সে দেশের আদালত। কারণ হিসেবে বলা হয়, শালিমার গার্ডেন ইউনেসকোর তালিকাভুক্ত বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। এর ২০০ ফুটের মধ্যে মেট্রোরেল হলে শালিমার গার্ডেনসহ মোগল আমলের ১১টি স্থাপনার ক্ষতি হবে। ভারত সরকারও সম্প্রতি ৩০০ কোটি ডলারের একটি হীরক উত্তোলন প্রকল্প সাময়িকভাবে স্থগিত করে দিয়েছে। উদ্দেশ্য, বনের বাঘের চলাচলের পথ অবাধ রাখা ও পরিবেশ রক্ষা। আপাতভাবে বেঁচে যায় ভারতের মধ্যপ্রদেশের ছাত্তারপুর বনাঞ্চলের ৯৭১ হেক্টর এলাকার মোট ৪ লাখ ৯২ হাজার গাছ। বাংলাদেশের সুন্দরবনও বিশ্ব ঐতিহ্যের অংশ। আমাদের চীনের প্রাচীরের মতো কিছু নেই। আমাদের আছে সুন্দরবনের মতো প্রাকৃতিক রক্ষাপ্রাচীর। সুন্দরবন অফুরান সম্ভাবনাময় প্রাণসম্পদের ভান্ডার। এর জন্য নিশ্চিতভাবে ক্ষতিকর রামপাল প্রকল্প নিয়ে এগোনোর আগে তাই পুনরায় ভাবা উচিত। সুন্দরবনের কোনো বিকল্প নেই। বৈশ্বিক আইনব্যবস্থার দর্শন দিনকে দিন গভীর ও ব্যাপক হচ্ছে। মানুষ, সমাজ ও প্রকৃতির পক্ষে নতুন নতুন আইন প্রণীত হচ্ছে। আইন থাকলে আজ বা কাল অপরাধীকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোর সম্ভাবনা থাকে। সুতরাং ভাবিয়া করিও কাজ, করিয়া ভাবিও না। ফারুক ওয়াসিফ: সাংবাদিক ও লেখক। উৎসঃ প্রথমআলো পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 03 Nov, 2016 কর্তৃপক্ষ কখনোই দায়ী থাকবে না? 19 Oct, 2016 লালন ও ডিলান এবং হারানো হৃদয় 28 Sep, 2016 পা বাড়ালেই সবদিকেই বাংলাদেশ 25 Sep, 2016 ফারাক্কার তিন অভিশাপ 22 Sep, 2016 সন্তানের হাতে নিহত হওয়ার এ সময় 19 Sep, 2016 তুমি এমনই জাল পেতেছ সংসারে 25 Aug, 2016 সাধু, ভাবিয়া করিও কাজ... 17 Aug, 2016 হস্তীর বঙ্গদর্শন 10 Aug, 2016 আবার ‘উই আর লুকিং ফর শত্রুজ’? 27 Jul, 2016 তুর্কি সুলতান ও রুশ জারের হঠাৎ মৈত্রী! 17 Jul, 2016 সমাজই এ যুদ্ধের প্রধান শিকার 29 Jun, 2016 আবার ভূতের ভয় দেখা শুরু করেছে ইউরোপ 10 Jun, 2016 নদী, মায়া ও মানুষ 29 May, 2016 ‘এবার তবে আমরা কোথায় যাব?’ 18 May, 2016 অপরাধ না করার শাস্তি 09 May, 2016 পাঞ্জেরির ঘুম কি ভাঙবে না? 25 Apr, 2016 হায় আমাদের জীবন–মৃত্যুর ম্যানেজার! 29 Mar, 2016 একচোখা শোক ও আইএসের পেছনের হাত 23 Mar, 2016 নির্বাচন ও কবর খোঁড়ার রাজনীতি 03 Mar, 2016 ‘শিশুটি মরে গেছে, হায় আমার বাংলাদেশ!’ 29 Feb, 2016 জামাইয়ের আদর চলুক, শাস্তি হোক সাংবাদিকের 28 Feb, 2016 আততায়ী, কর্তৃপক্ষ ও রাষ্ট্রকে খুঁজছি 14 Feb, 2016 ভ্যালেন্টাইন এরশাদ 29 Jan, 2016 সিস্টেমটাই যেখানে বিপজ্জনক 09 Jan, 2016 থাকার দেশ না টাকার দেশ বাংলাদেশ? Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: থিওরি অব রিলেটিভিটি : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম মোফাজ্জল করিম test@gmail.com থিওরি অব রিলেটিভিটি : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ 28 November 2014, Friday আইনস্টাইনের থিওরি অব রিলেটিভিটি বা আপেক্ষিক তত্ত্ব নিয়ে পদার্থবিদ্যার শিক্ষার্থীদের গলদঘর্ম হতে দেখে আমাদের দেশের বস্তুবাদী চিন্তাবিদরা বহুকাল আগেই এর একটি দেশজ সংস্করণ বের করে গেছেন, পাঠক এ কথা জানেন কি? জানেন না, না? জানবেন কী করে! এটাই তো আমাদের শিক্ষাব্যবস্থার দৈন্যদশার প্রমাণ। যে বিষয়টি আমাদের দৈনন্দিন জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে উঠতে-বসতে, আপদে-বিপদে, সুখে-দুঃখে সব সময় কাজে লাগছে, যার ব্যবহার ছাড়া আমাদের জীবন অচল, দেখুন তো দেখি, সেই থিওরি অব রিলেটিভিটি : বাংলাদেশ সংস্করণ বা বাংলাদেশ স্টাইল-ই কি না আমাদের পাঠ্যসূচিতে অন্তর্ভুক্ত নেই! আমাদের কোমলমতি বালক-বালিকারা জীবনের শুরুতে স্কুলে ভর্তি হওয়ার সময় মা-বাবাকে এই থিওরি প্রয়োগ করতে দেখে যে শিক্ষা লাভ করে, তা তার কচি মনে দারুণভাবে গেঁথে যায়। এরপর পাশ-ফেল, চাকরিবাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য, মায় ছাত্রজীবনেই লাইসেন্স-পারমিট-টেন্ডারবাজিতে টু-পাইস ইনকাম করতে গেলেও সে এই থিওরি প্রয়োগ করে দ্রুত তরিক্কি লাভ করে। যে এই থিওরি শেখেনি বা এই থিওরির প্রয়োগ করতে ব্যর্থ হয় তার জীবন অন্ধকার। সে মামু, মামা, মামুর জোর ইত্যাদি কাকে বলে, কত প্রকার ও কী কী ইত্যাদি বিষয়ে একেবারে বকলম। ফলে সব বিষয়ে তুখোড় হয়েও শুধু এই বিষয়ে দুর্বল হওয়ার কারণে কোনো কিছুতেই সে সাফল্যের মুখ দেখতে পায় না। বর্তমান প্রতিযোগিতার বাজারে কোনো কিছু অর্জন করতে হলে একজন রিলেটিভ থাকতেই হবে। এটাই বাংলাদেশের প্রেক্ষিতে থিওরি অব রিলেটিভিটি। আগে শুধু ভাগ্নেরা খুঁজে খুঁজে বের করত মামুদের, এখন দিনকাল পাল্টেছে। জাতি গঠনে উদগ্রীব মামুরা দেখছেন, ভাগ্নেরা বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় খুব একটা সুবিধা করতে পারছে না। তাঁরা যে তাদের সময়মতো সাহায্য-সহযোগিতা করবেন সে সুযোগটাও মামুদের জন্য তারা তৈরি করতে পারছে না। তাঁরা তাই জাতির বৃহত্তর স্বার্থে ময়দানে নেমে পড়েছেন। কোনো রকম রাখঢাক না করে তরিকা বাতলে দিচ্ছেন ভাগ্নেরা কিভাবে কতটুকু এগোলে বাকিটুকু তাঁরাই সামাল দেবেন। ভাবটা এ রকম, যেন মাঝি বলছে যাত্রীদের : তোমরা কোনোমতে নৌকাতে ওঠো তো বাপু, ওপারে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব আমার। সম্প্রতি এক বড় মামু এ ব্যাপারে একেবারে ঝেড়ে কেশেছেন : তোমরা কোনোমতে লিখিত পরীক্ষাটা পাস করো, পরবর্তী পর্যায়ে মৌখিক পরীক্ষা ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়াদির জন্য নো চিন্তা, ডু ফুর্তি, আমরা আছি। এ রকম বরাভয় পাওয়ার পরও কোনো অকালকুষ্মাণ্ড ভাগ্নে যদি বিসিএস বা এ ধরনের কোনো প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষার বৈতরণী পার হতে না পারে, তবে তাকে দল থেকে, না না দেশ থেকে বের করে দেওয়া উচিত। এ ছেলেকে দিয়ে কিচ্ছু হবে না- দেশে আইনশৃঙ্খলা প্রতিষ্ঠিত হবে না, গণতন্ত্রের বিকাশ হবে না, গণতন্ত্রের প্রথম সোপান যে সাধারণ নির্বাচন, তাতেও একজন দেশপ্রেমিক, নিরপেক্ষ, কর্তব্যপরায়ণ ও আপাদমস্তক সৎ সরকারি কর্মচারী হিসেবে আমাদের দলের জন্য 'বুক পেতে' দেবে না। তার দক্ষ পরিচালনায় ভোটকেন্দ্রগুলো দখল করা, ব্যালট পেপারে সিল মারা, বিশেষ বিশেষ ভোটারদের ভোটকেন্দ্রে আসতে না দেওয়া ইত্যাদি দায়িত্ব পালন মোটেই সম্ভব হবে না। হবে কী করে? সে তো মামু কে, মামুর ভূমিকা কী তাই জানে না। থিওরি অব রিলেটিভিটি : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ ২. এখানে পাঠকের কাছে একটা বিষয় খোলাসা করা দরকার। এতক্ষণ আমরা থিওরি অব রিলেটিভিটি- যার দেশজ সংস্করণের নামকরণ হতে পারে 'মামাতত্ত্ব'- সম্পর্কে আলোচনার অবতারণা করতে গিয়ে শুধু মামা-মামা করছি। মনে হতে পারে যেন চাচা, ফুপা, খালু, দাদা, দুলাভাই গংদের বাদ দিয়ে শুধু মামার ধামা ধরছি আমরা। তেমনি আমরা যখন বলি, 'শুধু আমি আর মামু, ভাগ করি খামু' তখনো ভাগ-বাটোয়ারা থেকে অন্য সবাইকে মনে হয় যেন বাদ দিচ্ছি। আসলে রিলেটিভিটি থিওরিতে অর্থাৎ মামাতত্ত্বে মামা বা মামু একটি প্রতীকী শব্দ। ফলে আমাদের একটা বহুল উচ্চারিত প্রবাদ বাক্য 'নাই মামার চেয়ে কানা মামা ভালো' শুধু মামাকেই বোঝায় না, থিওরি অব রিলেটিভিটির আওতায় আসলে আত্মীয়-অনাত্মীয়- রিলেটিভ-ননরিলেটিভ (লক্ষ করে দেখুন, নন শব্দাংশটিকে রিলেটিভের পরে নিয়ে এলে খাপে খাপে মিলে গিয়ে ইংরেজিমিশ্রিত বাংলা হয়ে যায় 'রিলেটিভ নন', অর্থাৎ আত্মীয় নন। কাকতালীয় হলেও ব্যাপারটা বেশ মজার) সবাই এসে যায়। যার কাছ থেকে উপকার পাওয়া যায়, ঠেকায়-অঠেকায় যার কাছে গিয়ে সাহায্যের হাত পাতা যায়, যার সামর্থ্য আছে সাহায্য করার, তিনিই এই থিওরির আওতায় 'মামা' বা 'মামু'। তাঁর সঙ্গে সাহায্যপ্রত্যাশীর কোনো রক্তের সম্পর্ক তো দূরের কথা, এমনকি আলাপ-পরিচয়ও না থাকতে পারে, তিনি পাড়াতুতো-গ্রামতুতো মামা-চাচা-খালু কিংবা সর্বজনস্বীকৃত অমুক ভাই-তমুক ভাই হলেও হতে পারেন, না হলেও ক্ষতি নেই, তাঁর সাহায্য করার ক্ষমতা থাকলেই হলো। তিনি নিজে ক্ষমতাধর হতে পারেন, হলে ভালোই, না হলে ক্ষমতার বলয়ের কাছাকাছি থাকলেই চলবে। এক কথায় যাঁকে ধরলে কাজ হয় তিনিই মামা বা মামু। নিজের মামাই হোক আর পরের মামাই হোক। রিলেটিভ না হয়েও তিনি রিলেটিভ। কাজ হাসিলের জন্য তিনি শুধু আত্মীয় নন- পরমাত্মীয়। থিওরি অব রিলেটিভিটি বা মামাতত্ত্বের মামা, আমাদের কিংবদন্তির মামা, যাঁর নামের সঙ্গে যোগ হয়েছে জোর শব্দটি, তিনি যে কত কাজের লোক, তিনি কানা হোন আর খোঁড়া হোন, তাঁর অস্তিত্ব যে কত অপরিহার্য, তা বঙ্গদেশীয়রা আবহমানকাল ধরে হাড়ে হাড়ে টের পেয়ে আসছেন। ৩. মামাদের কারণে মামাহীনদের ভাগ্যবিপর্যয় নতুন কিছু নয়। এটা চলে আসছে সেই ব্রিটিশ আমল বা তারও আগে থেকে। অনেক যোগ্য প্রার্থীকে ডিঙিয়ে মামারা ভাগ্নেদের চাকরি-বাকরি, জমি-জিরাত, মনসবদারি-তহশিলদারি বাগিয়ে দিতেন। মামারা ছিলেন বাগিয়ে দেওয়া বাগাওতউল্লা, আর ভাগ্নেরা পানেওলা পানাউল্লা। তবে এসব বাঁকা পথে সুবিধা আদায় বা খেলাত বণ্টন ছিল সীমিত আকারে। বাদশাহী আমলে বোধগম্য কারণেই সুবিধা প্রদানে কোনো নিয়মনীতির বালাই ছিল না। বাদশাহ নামদার বা তাঁর ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মচারী ইচ্ছামতো যাকে খুশি তাকে যা খুশি তাই দান করতে পারতেন। তা সুবেহদারি-মনসবদারি বা চাকরি-বাকরি, খেতাব-খেলাত যাই হোক না কেন। ইংরেজদের প্রথম আমল অর্থাৎ ইস্ট ইন্ডিয়া কম্পানি আমলও (১৭৫৭-১৮৫৮) মোটামুটি এভাবেই চলে। কিন্তু ব্রিটিশ সরকার ভারতবর্ষের শাসনভার গ্রহণ (১৮৫৮) করার পর জনপ্রশাসন ও অন্যান্য আনুষঙ্গিক বিষয়ে আইনকানুন ও বিধিবিধানের প্রবর্তন করে। ফলে যোগ্যতার ভিত্তিতে, প্রতিযোগিতার মাধ্যমে চাকরিতে নিয়োগ, পদোন্নতি ইত্যাদি নির্ধারিত হতে থাকে। কিংবদন্তির মামুজির ভূমিকা তখন পুরোপুরি না হলেও অনেকখানি খর্ব হয়ে যায়। সার্বিক শাসনব্যবস্থায় খেয়ালখুশিপনার স্থলে প্রবর্তিত হয় ডিসিপ্লিন। যে লৌহশাসন ও সিভিল সার্ভিসের 'স্টিল ফ্রেমের' জোরে ইংরেজরা এই ভূখণ্ডে দোর্দণ্ড প্রতাপে ২০০ বছর রাজত্ব করতে সক্ষম হয়েছিল, তার মূলে ছিল আইনের শাসন, ন্যায়পরায়ণতা ও সুবিচার। তাদের লেখা আইনের বইগুলোতে প্রথমে ব্রিটিশ ইন্ডিয়া কেটে পাকিস্তান ও পরে, ১৯৭১ সালের পর, পাকিস্তান কেটে আমরা বাংলাদেশ বসিয়ে চালিয়ে যাচ্ছি। নিজেদের তেমন কিছু ইতরবিশেষ সংযোজন-বিয়োজন করতে হয়নি। ব্রিটিশদের প্রণীত ও প্রচলিত আইনকানুনগুলোকে আমরা আমাদের দেশের পরিপ্রেক্ষিতে উপযোগী বলেই গ্রহণ করেছি। এতে দোষের কিছু নেই। ঔপনিবেশিক কবলমুক্ত সব দেশই তাই করেছে। ৪. কিন্তু সর্বনাশটা হলো ওইসব আইনের প্রয়োগের বেলায়। আমরা মুখে সাম্যের কথা, ন্যায়নীতির কথা, আইন সবার জন্য সমান, কেউই আইনের উর্ধ্বে নয়- এসব কথা তারস্বরে হরহামেশা বলতে বলতে গলা ফাটালেও প্রয়োগের বেলা লবডঙ্কা। নইমুদ্দির গোয়ালের গরু চুরি হয়ে গেছে, নইমুদ্দি থানায় গেল এজাহার দিতে। সারা দিন সেখানে বসে থেকে সন্ধ্যায় বিফল হয়ে মুখটা ব্যাজার করে ফিরে আসতে হলো বেচারাকে। কেন? সে আগে চেয়ারম্যান সাহেবকে জানায়নি বলে ঘটনা যে সত্যি, তা দারোগা সাহেব মানতে নারাজ। পরদিন অবশ্য ক্ষমতাসীন দলের এক চ্যাংড়া মাতবরকে ধরে, দারোগার হাতে কিছু গুঁজে দিয়ে 'কেস' নেওয়াতে সক্ষম হয় নইমুদ্দি। এখানে ওই চ্যাঙ্গট নেতা আর সর্বরোগের মহৌষধ মালপানি হচ্ছে হাল আমলের মামু। ওইদিনই এমপি সাহেবের মুরগি চুরির কথিত অপরাধে তিনজন বেকার যুবককে থানায় এনে রামধোলাই দেওয়া হলো। ওরাই মুরগি চুরি করেছে মনে করার কারণ হলো, এমপি সাহেবের ইলেকশনের সময় ওরা কাজ করেছিল বিরোধী প্রার্থীর পক্ষে। পাড়ার মনু মিয়া মাস্টারের ছেলেটা সেই ছোটবেলা থেকে লেখাপড়ায় খুবই তেজি, কখনো ফার্স্ট ছাড়া সেকেন্ড হয়নি পরীক্ষায়। জিপিএ ৫, ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট ইত্যাদির ওপরেও কিছু থাকলে নিঃসন্দেহে সেগুলোও পেত ছেলেটি। পাসটাস করে সে ইন্টারভিউ দিল ব্যাংকের চাকরির জন্য। পদ একটাই। দুর্ভাগ্য, সে চাকরিটা পেল না। কারণ তার মামুর জোর ছিল না। পেল কে? পেল পাশের বাড়ির কন্ট্রাক্টর সাহেবের ছেলে, যে রেজাল্টের দিক দিয়ে কখনো শিক্ষকপুত্রের ত্রিসীমানায়ও পৌঁছাতে পারেনি। এখানেও মামু। এই ছেলের বড়লোক বাবার সঙ্গে খাতির ব্যাংকের এক ডাইরেক্টর সাহেবের। রিলেটিভিটি থিওরির এ ধরনের হাজার হাজার উদাহরণ ছড়িয়ে-ছিটিয়ে আছে আমাদের চারপাশে। বাংলাদেশের অফিস-আদালতে কোনো কিছুর জন্য পারমিশন বা অনাপত্তি চাইতে গেলে শুরুতেই শুনতে হবে 'না'। তা আপনার 'কেসটি' যতই নির্ভেজাল ও সঠিক হোক না কেন। আবার সকালবেলার ওই 'না'-ই দুপুরে একটা টেলিফোন কলের পর অথবা টেবিলের তলা দিয়ে একটি খাম ধরিয়ে দেওয়ার পর এক মিনিটে হয়ে যাবে 'হ্যাঁ'। অবশ্য 'সঠিক খালের ভেতর দিয়ে' না গেলে প্রথমে আপনাকে না শুনতেই হবে, যদি আপনি কেউকেটা কেউ না হন। 'সঠিক খাল' মানে বুঝলেন না? ওটা ইংরেজি 'থ্রু প্রপার চ্যানেল' কথাটির 'সঠিক' বঙ্গানুবাদ। স্বাধীনতার পর অফিস-আদালতে যখন বাংলায় নোট লেখার হিড়িক পড়ে গেল তখন একজন কেরানি সাহেব নাকি নথিতে ইংরেজি বাক্যাংশটির এরূপ অনুবাদ করেছিলেন। এটা অবশ্য আমার শোনা কথা। সত্য-মিথ্যা জানি না। তা আলেচ্য ক্ষেত্রে সঠিক খাল হচ্ছে ওই মামু। আর রিলেটিভও সেই মামু এবং/অথবা বাংলাদেশ ব্যাংকের টাঁকশাল থেকে ছাপানো কিছু বিশেষ কাগজভর্তি একটি খাম। এই রিলেটিভদের ক্যারিশমা মুহূর্তে জাদুর মতো কাজ করে। পরিচয়, সম্পর্ক, সুপারিশ, তদবির- এসব ছাড়া বাংলাদেশে বেঁচে থাকা দায়। স্কুলে বাচ্চাদের ভর্তি করানো, অফিসে পিয়ন-চাপরাশির চাকরি থেকে শুরু করে ছোট পদ-বড় পদ, পদোন্নতি, বদলি, সবখানেই সুপারিশ, সবখানেই তদবির। আজকাল একটি পিয়নের চাকরি পেতেও নাকি লাগে চার-পাঁচ লাখ টাকা, আর না হয় কড়া ডোজের তদবির। আর শিল্প-কলকারখানা স্থাপন করতে গেলে যে কি পরিমাণ তদবির- বোথ ইন ক্যাশ অ্যান্ড কাইন্ড লাগে তা ভুক্তভোগী মাত্রই জানেন। দেশি-বিদেশি বিনিয়োগকারীরা তো এই কারণে আমাদের দেশে বিনিয়োগ করতেই চান না। পরিচয় নেই তো যত প্রয়োজনই হোক না কেন দেখা মিলবে না স্যারের। এক লোক গেছে এক অফিসের বড় সাহেবের সঙ্গে দেখা করতে। তিনি অফিসের কাজকর্ম ফেলে টেবিলের ওপর পা তুলে টিভিতে বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের ক্রিকেট খেলা দেখছিলেন। ওই দর্শনার্থী 'আসব স্যার?' বলেই পর্দা ঠেলে ঢুকে পড়তে স্যার রেগেমেগে অগ্নিশর্মা হয়ে গেলেন। 'দেখছেন না কাজে ব্যস্ত আছি? বিনা পারমিশনে ঢুকে পড়লেন কেন? অফিস ডিসিপ্লিন-টিসিপ্লিন কিছুই জানেন না দেখছি।' ওই লোকের আবার গায়ের রং ছিল কাক্কেশ্বর কুচকুচে। বড় সাহেব তাকে টিটকারি মেরে বললেন, তা ক্রিকেটের মাঠ ছেড়ে এখানে কি মনে করে জনাব হ্যামিল্টন মাসাকাদজা? জিম্বাবুয়ে দলের একজন ঘোর কৃষ্ণকায় খেলোয়াড়ের গাত্রবর্ণের সঙ্গে তার গাত্রবর্ণের মিলের কারণে যে খোঁচাটি দিলেন বড় সাহেব, তা নীরবে হজম করে লোকটি বলল, স্যার, আমাকে এমপি সাহেব পাঠিয়েছেন। আপনাকে ফোনে পাচ্ছিলেন না...। সঙ্গে সঙ্গে স্যারের মেজাজ স্ফুটনাঙ্ক থেকে এক লাফে হিমাঙ্কের নিচে। 'আরে, তা আগে কইবেন তো। দেখো তো দেখি, আমি ভাবলাম এই অসময়ে কে না কে...।' ইত্যাদি। যেকোনো জায়গায়- বাসের লাইনে, ব্যাংকের কাউন্টারে, ট্রেনের টিকিট কিনতে- আপনাকে শেষে গিয়েও লাইনের পেছনে দাঁড়াতে হবে না, আপনি সর-সর করে চলে যাবেন লাইনের আগায়, যদি আপনি মোটামুটি বড়সড় কেউও হন। আর আপনার ডাকসাইটে পরিচয়টা যদি আপনার বেশভূষা-হম্বিতম্বি থেকে ওখানকার কর্তাব্যক্তিটি বা কাউন্টারের ওপাশের কর্মচারী একবার পেয়ে যান, তাহলে তো পরবর্তী দৃশ্যে নির্ঘাত দেখা যাবে আপনি ওই কুঠুরির ভেতর ফ্যান অথবা এসির আরাম উপভোগ করছেন চা কিংবা শীতল পানীয় সেবা করতে করতে। আর আপনার কাজটি করে দেওয়ার জন্য বড় কর্তা-ছোট কর্তা-পিয়ন-চাপরাশি সবার হুটোপুটি লেগে যাবে। এখানে রিলেটিভিটি হচ্ছে আপনার সামাজিক অবস্থান বা আপনার পদ, আপনার পরিচয়। ওটা হচ্ছে বাংলাদেশে যেকোনো আইন ভঙ্গ করার লাইসেন্স। তা ট্রাফিক লাইট অমান্য করাই হোক বা যেকোনো অফিস-আদালত-হাসপাতালে 'দেখি সরেন' বলে দ্বাররক্ষীকে ভ্রুকুটি দেখিয়ে ঢুকে পড়াই হোক। এসব ক্ষেত্রে ভাবটা এই : লালবাতিতে গাড়ি যাবে না, বিনা অনুমতিতে কারো অফিসে ঢোকা যাবে না, ডাক্তার রোগী দেখার সময় তার চেম্বারের ভেতর যাওয়া যাবে না- এসব নিয়মকানুন তো আমার জন্য নয়, পাবলিকের জন্য। আমাকেও কি পাবলিক মনে করেন নাকি? এ ধরনের সিচুয়েশনে যে কথাটি প্রায়শই উচ্চারিত হতে শোনা যায় তা হচ্ছে : জানেন, আমি কে? না, আপনাকে পাবলিক মনে করি না, তাহলে আপনি কে? আপনি আজরাইল ফেরেশতা, না মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা। ওবামাও তো তাঁর নিজ দেশে আইন না মানলে ওই ট্রাফিক পুলিশ তাঁর প্রেস্টিজ পাংচার করতে এক মুহূর্ত দেরি করে না। আসলে সেই ঔপনিবেশিক আমল থেকে যে 'এলিটিজম' বা অভিজাততন্ত্রের জন্ম হয়েছিল, এত রক্তের সাগর পেরিয়ে এসেও দেশ তা থেকে মুক্ত হতে পারেনি। এর কারণ, দেশে সাম্য নেই, সম-অধিকার নেই, আইন সবার ওপর সমানভাবে প্রয়োগ করা হয় না। জালিয়াতিতে এক পাল বড় কর্তা ধরা পড়লে, কোনো হোমরা-চোমরার আত্মীয় সাত খুনের দায়ে অভিযুক্ত হলে, কোনো মন্ত্রী-ফন্ত্রী কোনো গণবিরোধী কথা বললে তোলপাড় শুরু হয়ে যায় কী করে সেই অভিযুক্ত ব্যক্তি বা ব্যক্তিদের রক্ষা করা যায়। অথচ একজন সাধারণ মানুষ এ ধরনের অপরাধ করলে সঙ্গে সঙ্গে তাকে জালিয়াত, খুনি, দেশদ্রোহী ইত্যাদি খেতাব দিয়ে রিমান্ডে নিয়ে বাঁশডলা দেওয়া হয়। বিচারের মানদণ্ডের এই যে হেরফের, এতে মানুষের মধ্যে দেখা দেয় চরম হতাশা ও দেশের শাসনব্যবস্থা, বিচারব্যবস্থা ইত্যাদির প্রতি সীমাহীন আস্থাহীনতা। এভাবে একটা দেশ চলতে পারে না। ৬. এর চেয়ে বরং একটা কাজ করলে কেমন হয়! আসুন, আমরা দেশে দুই ধরনের আইন চালু করি। যারা সমাজের ওপরের তলার মানুষ- যেমন কোনো রাজনৈতিক দলের নেতা, পেশীমানব, অগাধ সম্পদের মালিক, ইয়া বড় আমলা, একগাদা সন্ত্রাসীর পোষক- তাদের জন্য এক আইন। আর বাদবাকি আমজনতার জন্য আরেক আইন। প্রথম ক্যাটাগরির হুজুরদের বিচারব্যবস্থা, আদালত, কারাগার সবই হবে ভিআইপি মানের, আর বাকি পাবলিক এখন যেমন আছে, তেমন থাকলেই চলবে। এই দ্বিমুখী ব্যবস্থা চালু হলে আর কারো কোনো আপত্তি থাকবে না, থাকবে না কোনো চিত্তজ্বালা (হার্টবার্নিং)। তখন রেলের টিকিটের লাইন দেড় মাইল লম্বা হলেও ফার্স্ট ক্যাটাগরির অর্থাৎ ফার্স্ট ক্লাস সিটিজেন অথবা তাঁর লোক গটগট করে স্টেশন মাস্টারের কামরায় ঢুকে এক মুহূর্তে কাজ শেষ করে হেলতে-দুলতে বেরিয়ে আসবেন। ডাক্তার সাহেব অপারেশন থিয়েটারে যত জটিল অপারেশনে ব্যস্ত থাকুন না কেন, ওই স্যার দরজা ঠেলে ঢুকে বলতে পারবেন, ডাক্তার সাহেব, আমার প্রেসারটা একটু মেপে দিন তো। আমি একটা মিটিংয়ে যাচ্ছি। অলরেডি লেট হয়ে গেছে। জলদি করুন। এ ধরনের সিস্টেম চালু হলে সবাই চেষ্টা করবে 'ফার্স্ট ক্লাস সিটিজেন' হতে। তাতে লেখাপড়া লাগুক আর না লাগুক। বরং না লাগার সম্ভাবনাই বেশি। এখন যাঁরা 'রিলেটিভ' আছেন তাঁদের পোঁ ধরলেই হলো, পোঁ ধরতে ধরতে দেখা যাবে একদিন নিজেরাও সেকেন্ড ক্লাস থেকে ফার্স্ট ক্লাস সিটিজেনে প্রমোশন পেয়ে গেছেন। তাঁদের মেধায় ও শ্রমে দেশ নিশ্চয়ই উন্নয়নের জোয়ারে ভেসে যাবে! ৭. সেই ১৯৮৮ সালে এ বিষয়ে একটি কবিতা লিখেছিলাম। প্রাসঙ্গিক হবে মনে করে আজকের লেখাটার ইতি টানছি সেই কবিতাটি দিয়ে। কবিতাটির নাম 'বাছ-বিচার'। কবিতাটি এ রকম : 'কেডা রে? ওইখান দিয়া যায়/এইডা কেডা?' 'আমি, আমি চেয়ারম্যানের বেডা।'/ 'ও ...বাজান?/ তা আহেন না এট্টু বইয়া যান/ওই হালারা খাড়াইয়া দেখতাছস কী/ লণ্ঠনটা আন।'/ 'কেডা রে? আবার কেডা আইলি?'/'হুজুর আমি কদমালি'/'কী কইলি? কদমালি?/ওরে আমার সোনারচান পিতলাঘুঘু/তা এইদিকে ঢুঢু/মারতাছো ক্যারে?/রাইতে-বিরাইতে নাই বুঝি আর কাম?/আবে হালায়, ভাগলি? না আমি আইতাম?' লেখক : সাবেক সচিব, কবি mkarim06@yahoo.com. উৎসঃ কালেরকণ্ঠ পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: 'জামায়াতি রাজনীতি' অকার্যকর করার যুদ্ধ Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম মমতাজউদ্দীন পাটোয়ারী test@gmail.com 'জামায়াতি রাজনীতি' অকার্যকর করার যুদ্ধ 03 April 2014, Thursday আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালের তদন্ত সংস্থা জামায়াত নিষিদ্ধের সুপারিশসহ একটি প্রতিবেদন প্রসিকিউশনের কাছে জমা দিয়েছে। তবে মহান মুক্তিযুদ্ধের সময় জামায়াতে ইসলামী ও এর সব সহযোগী সংগঠন সারা দেশে গণহত্যাসহ মানবতাবিরোধী যেসব অপরাধ সংঘটিত করেছে, তার তথ্যপ্রমাণ সংকলিত করেছে তদন্ত কমিটি। পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত তথ্য থেকে জানা গেছে, এতে ৩৭৩ পৃষ্ঠার তদন্ত প্রতিবেদনসহ মোট ৯৫৭ পৃষ্ঠার দালিলিক প্রমাণাদি রয়েছে। এই প্রতিবেদনে জামায়াত ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর বিরুদ্ধে ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধে গণহত্যা, যুদ্ধাপরাধ, জেনেভা কনভেনশন ও আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘন, মানবতাবিরোধী অপরাধ সংঘটনের চেষ্টা, ষড়যন্ত্র এবং এসব অপরাধ ঠেকাতে ব্যর্থতাসহ সাত ধরনের অভিযোগ আনা হয়েছে। জামায়াত ও এর সহযোগী সংগঠনগুলোর তৎকালীন নেতারা পাকিস্তানের হানাদার বাহিনীকে সহযোগিতা দিতে শান্তিবাহিনী, আলবদর ও আলশামস বাহিনী গঠন এবং সেগুলোর কার্যক্রম পরিচালনার মাধ্যমে এসব অপরাধ সংঘটিত করেছে। একইভাবে এরই মধ্যে ঘোষিত রায়সমূহে জামায়াতে ইসলামীর তৎকালীন কর্মকাণ্ড সম্পর্কে যেসব পর্যবেক্ষণ ট্রাইব্যুনাল প্রদান করেছেন, তাও প্রতিবেদনে তুলে ধরা হয়েছে। বলা চলে, তদন্ত সংস্থা জামায়াত নিষিদ্ধের জন্য যেসব তথ্যপ্রমাণ ও বিচারিক উপাদান অপরিহার্য- তা নিয়েই এই প্রতিবেদনটি প্রসিকিউশনের কাছে হস্তান্তর করেছে। গণমাধ্যমে এর নানা দিক এরই মধ্যে তুলে ধরা হয়েছে। আশা করা যাচ্ছে, প্রসিকিউশন প্রতিবেদনটি যাচাই-বাছাই করে আইনি প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করবে। সেটি শুরু হলে একাত্তরে সংঘটিত মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচারসংক্রান্ত মামলার কার্যক্রম নতুন পর্যায়ে উন্নীত হবে। এ ক্ষেত্রে সফল হলে দেশের রাজনীতিতে নতুন বাঁক সৃষ্টি হতে পারে। 'জামায়াতি রাজনীতি' অকার্যকর করার যুদ্ধ জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার বর্তমান উদ্যোগটি বোঝার জন্য স্মরণ করা প্রয়োজন ন্যুরেমবার্গ আদালতের কথা। ন্যুরেমবার্গ ট্রাইব্যুনাল অপরাধ সংঘটনের হোতাদেরই শুধু নয়, নাজিসহ সাতটি সংগঠনকে বিচারের মাধ্যমে নিষিদ্ধ করেছে, বাংলাদেশেও তাই একইভাবে জামায়াতকে নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। জার্মানিতে সেই থেকে এসব দল নিষিদ্ধ রয়েছে, ইউরোপ দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের পর থেকে এ কারণেই এ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ-নাৎসিবাদ থেকে অনেকটা নিরাপদ রয়েছে। ইউরোপের রাষ্ট্রসমূহ গণতন্ত্র ও উন্নয়নের ধারায় সেই থেকে যুক্ত থাকার নিরবচ্ছিন্ন পরিবেশ পেয়েছে। আজকের ইউরোপের অবিশ্বাস্য পরিবর্তনের পেছনে মূলত রয়েছে ফ্যাসিবাদী-নাৎসিবাদী সংগঠন ও তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি। গণতন্ত্রে ফ্যাসিবাদী-নাৎসিবাদী শক্তির রাজনীতি করার অধিকার থাকতে পারে না- এ কথা ন্যুরেমবার্গ আদালতের রায় থেকে স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে। গণতন্ত্রবিরোধী অপশক্তির রাজনীতি করার অধিকার গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ও সমাজে থাকতে পারে না- সে কথাই নাৎসি আদর্শের ধারক দল ও তাদের রাজনীতি নিষিদ্ধের মধ্য থেকে প্রমাণিত হয়েছে। গণতন্ত্র মানে যার যা খুশি বা ইচ্ছে তা করার অধিকার নয়। গণতন্ত্রে বিশ্বাসীদের জন্যই কেবল গণতন্ত্র হতে পারে। গণতন্ত্রে বেশ কিছু আইন ও নিয়মকানুন রয়েছে, যা প্রতিটি দলকে মানতে হয়। তাহলেই কেবল গণতন্ত্র বিকশিত হতে পারে। ফ্যাসিবাদী ও নাৎসিবাদী দলের রাজনীতি করার অধিকার দেওয়া ও থাকার কারণেই প্রথম বিশ্বযুদ্ধোত্তর ইতালি ও জার্মানিতে ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের চূড়ান্ত উত্থান, বিকাশ ও রাষ্ট্রক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হওয়ার সুযোগ ঘটেছে। ভোটের অধিকার নিয়ে গণতন্ত্রবিরোধী ওই অপশক্তিটি ইতালি ও জার্মানিতে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে পেরেছিল। রাষ্ট্রক্ষমতা হাতে পেয়ে দল দুটি গণতান্ত্রিক শক্তির ন্যূনতম গণতান্ত্রিক অধিকার রাখেনি, তাদের হত্যা, নির্যাতন ও দেশত্যাগ করতে বাধ্য করাসহ সব ধরনের শক্তির প্রয়োগ ঘটিয়েই দেশ দুটিতে ভয়াবহ উগ্র জাতীয়তাবাদী উন্মাদনার সৃষ্টি করেছিল, ইউরোপসহ দুনিয়াকে গ্রাস করার উন্মত্ততায় মেতে উঠেছিল। শেষ পর্যন্ত ফ্যাসিবাদ ও নাৎসিবাদের ঘটনা তো বিশ্বসভ্যতাকে ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে নিক্ষেপ করেছিল। চরম গণতন্ত্রবিরোধী শক্তির হাতে রাষ্ট্রক্ষমতা গেলে কী নির্মম পরিণতি দেশ, জাতি ও বিশ্বসভ্যতার জীবনে নেমে আসে, তার জ্বলন্ত উদাহরণ ও প্রমাণ হচ্ছে ফ্যাসিবাদী ইতালি ও নাৎসিবাদী জার্মানি। সে কারণেই ন্যুরেমবার্গ আদালত গণতন্ত্র ও মানবতাবিরোধী শক্তি হিসেবে ফ্যাসিবাদী-নাৎসিবাদী দল ও রাজনীতিকে নিষিদ্ধ করেছে। ইউরোপের দেশগুলোতে সেই থেকে মানবতাবিরোধী, গণতন্ত্রবিরোধী এসব দল সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ রয়েছে। এ থেকে এটিই প্রমাণিত হয়, গণতান্ত্রিক সমাজে কেবল গণতন্ত্রে বিশ্বাসী দল ও মতাদর্শের সহাবস্থানের রাজনীতির স্বীকৃতি থাকতে পারে, অন্য কোনো মতাবলম্বীর নয়। ১৯৭১ সালে জামায়াতের ভূমিকা বাংলাদেশ রাষ্ট্রবিরোধী ছিল বলেই ১৯৭২ সালে জামায়াতসহ মুক্তিযুদ্ধে বিরোধিতাকারী বেশ কিছু দলের রাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। কিন্তু ১৯৭৫ সালের আগস্ট-নভেম্বরের রাজনৈতিক পরিবর্তনের পর দেশের রাজনীতিসহ অনেক কিছুই বদলে ফেলা হয়। মুক্তিযুদ্ধের পক্ষের রাজনীতিকে কঠিন করে দেওয়া হয়। খুব সূক্ষ্মভাবে ফিরিয়ে আনা হয় সেসব দল ও রাজনীতিবিদদের, যারা মুক্তিযুদ্ধের বিরুদ্ধে ন্যক্কারজনকভাবে ১৯৭১ সালে অবস্থান নিয়েছিল। দেখা গেছে, ১৯৭৫ সালের পর বহুদলীয় রাজনীতির নামে তাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করা হয়। প্রতিকূল অবস্থা সৃষ্টি হয় প্রকৃত গণতান্ত্রিক শক্তি, শুভবোধসম্পন্ন রাজনীতি ও সংগঠনের জন্য। সেখান থেকেই জামায়াতের নতুনভাবে যাত্রা শুরু হয়। একাত্তরে যারা এত অপকর্ম ও অপরাধ সংঘটিত করেছে, যাদের বিরুদ্ধে বিচারের কাজও চলছিল- সেসব কিছু বাদ দিয়ে তাদেরই বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্বাসিত করা হলো। এর ফলে জামায়াত অচিরেই বাংলাদেশের রাজনীতিতেই শুধু নয়, সমাজ, অর্থনীতি, শিক্ষা, সংস্কৃতির সব ক্ষেত্রে ব্যাপক প্রস্তুতি ও আয়োজন নিয়ে প্রবেশ করার সুযোগ পায়। বাংলাদেশ সমাজের হেন কোনো প্রতিষ্ঠান নেই, অঞ্চল নেই যেখানে সুদূরপ্রসারী পরিকল্পনা নিয়ে দলটি শাখা-প্রশাখার বিস্তার ঘটায়নি। ধর্ম ও অর্থবিত্ত নিয়ে এরই মধ্যে সংগঠনটি দেশের রাজনীতিসহ সব কিছুতে একটি শক্ত অবস্থান নিয়ে দাঁড়িয়ে গেছে। অথচ দলটি বাংলাদেশ রাষ্ট্রের কোনো একটি মৌল আদর্শই মানে না, গ্রহণও করেনি। দলটির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে এমন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করা, যেখানে গণতন্ত্রের নাম-নিশানা থাকবে না। একটি তালেবানি জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার লক্ষ্য তাদের সুবিদিত, এটি মোটেও গোপন কিছু নয়। অথচ বাংলাদেশের রাষ্ট্রক্ষমতায় দলটি নির্বাচন ও বিপ্লব- এই দুই উপায়েই আসার সুযোগ নিচ্ছে। ধর্মের জিকির তোলার মাধ্যমে সাধারণ ধর্মপ্রাণ মানুষকে তারা কাছে টানছে, বিভ্রান্ত করছে, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সম্পর্কে বিরূপ ভাবাপন্ন করে তুলছে। জামায়াতের নেতা-কর্মী ও সমর্থকরা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধের বাংলাদেশ নয়, জামায়াতের কল্পিত বাংলাদেশে বিশ্বাসী হয়ে উঠছে। বিপুল অর্থবিত্ত ও নানা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে দলে ভেড়ানোর মাধ্যমে জামায়াত এরই মধ্যে যে জায়গায় চলে এসেছে- তাকে অবহেলা করার অর্থ হচ্ছে অদূর ভবিষ্যতে বাংলাদেশ রাষ্ট্রের মুক্তিযুদ্ধের আদর্শ ধূলিসাৎ হয়ে যাওয়া, গণতন্ত্র অপসারিত হওয়া এবং একটি তালেবানি চরিত্রের রাষ্ট্রব্যবস্থার দিকে চলে যাওয়া। জামায়াতের লক্ষ্য তেমন রাষ্ট্রই গড়ে তোলা। ক্ষমতার নাগাল পেলে সেটি তারা করবেই- এতে কোনো সন্দেহ নেই। গত তিন দশকের রাজনীতিতে জামায়াতের অবস্থান তেমন ধারণাকেই জোরালো করেছে। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, জামায়াতকে একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধে নিষিদ্ধ করার উদ্যোগ কতটা সম্ভব, কতটা বাস্তবসম্মত? এ নিয়ে একটি বিতর্ক এরই মধ্যে কোনো কোনো মহল থেকে করা হচ্ছে। যাঁরা এ নিয়ে সন্দেহ পোষণ করছেন, তাঁদের সে ধরনের সন্দেহ একেবারে অযৌক্তিক তা বলছি না। কেননা জামায়াতের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির ভিত্তি বাংলাদেশে খুব দুর্বল- তা বোধ হয় এখন আর দাবি করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশকে গত চার দশকে এমন একটি জায়গায় নিয়ে যাওয়া সম্ভব হয়েছে, যা গণতন্ত্রের জন্য কতটা হুমকির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, তা বোধ হয় সিরিয়াসলি কেউ দেখছে না। জামায়াতের মিত্র দলগুলো কমবেশি জামায়াতের রাজনীতিরই ধারক-বাহক হয়ে উঠেছে, বুদ্ধিবৃত্তিসহ নানা স্তরে সাম্প্রদায়িকতার বিস্তার বিস্তর ঘটেছে। বাংলাদেশের রাজনীতি ও সমাজবাস্তবতায় এমনি করে একটি জায়গা তৈরি হয়ে গেছে, যা এখন মোটেও অবিশ্বাস্য নয়। বাংলাদেশ রাষ্ট্রকে ১৯৭৫ সাল-পরবর্তী সময়ে গণতান্ত্রিক রাজনীতিতে সবল না করে সাম্প্রদায়িক ভাবাদর্শে অনেকটাই দুর্বল করে ফেলা হয়েছে। এই রাষ্ট্রের তলদেশ, মধ্যদেশ বা উপরিদেশসহ সব ক্ষেত্রেই সাম্প্রদায়িক মনমানসিকতা, দুর্বলতা ও দোদুল্যমানতার কাছে আত্মসমর্পণ করার আয়োজন সম্পন্ন করা হয়েছে। এমন রাষ্ট্রটি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার চ্যালেঞ্জ নেওয়ার অবস্থানে এখন কতটুকু আছে, তা তলিয়ে দেখার বিষয়। তবে চারদিকের বাস্তবতা বলে দিচ্ছে, বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক চেতনাবোধ ১৯৭১ বা ১৯৭২-৭৫ সালের বাস্তবতায় এখন আর নেই। বাংলাদেশ কতটা মুক্তিযুদ্ধকে সত্যিকার অর্থে ধারণ করে, তা নিয়ে প্রশ্ন তোলা হলে হয়তো কষ্টই বেশি পেতে হবে। তেমন অবস্থায় দলগতভাবে জামায়াত নিষিদ্ধ ও এর ভাবাদর্শগত অবস্থান অকার্যকর করার মতো কাজগুলো কতটা মুক্তিযুদ্ধের আদর্শের ধারক বাংলাদেশ রাষ্ট্রের জন্য অপরিহার্য, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। সে ক্ষেত্রে গণতন্ত্রবিরোধী শক্তিকে রোধ করতে যত দেরি হবে, তত বিপর্যয়ের মুখে বাংলাদেশের গণতন্ত্র পড়বেই। তা হতে থাকলে একসময় গণতান্ত্রিক শক্তির নিয়ন্ত্রণ রাষ্ট্র ও রাজনীতিতে অবশিষ্ট থাকবে না। তখন কারো পক্ষে করার মতো তেমন কিছু থাকবে না। তবে জামায়াতের রাজনীতি নিষিদ্ধের বিষয়টি খুব সহজে সম্পন্ন হবে না, দ্বিতীয় মুক্তিযুদ্ধের মতোই একটি কঠিন যুদ্ধ করতে হবে। সব অপশক্তি, স্বার্থপরতা ও দোদুল্যমানতার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। জামায়াতের আর্থিক, শিক্ষা, সাংস্কৃতিক ভিত্তি দুর্বল করার পাশাপাশি এর রাজনৈতিক মতাদর্শকে অকার্যকর করা, দুর্বল করা খুব সহজ কাজ নয়। এর জন্য সব গণতান্ত্রিক শক্তিকে পাশে নিতে হবে, জনগণকে সচেতন করার পরিকল্পনা হাতে নিতে হবে। তবেই মুক্তিযুদ্ধের চেতনার বাংলাদেশ জেগে উঠবে। লেখক : অধ্যাপক ও ডিন, সামাজিক বিজ্ঞান, মানবিক ও ভাষা স্কুল, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় (কালের কন্ঠ, ০৩/০৪/২০১৪) পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:তিন দশকে সবচেয়ে উষ্ণ অক্টোবর দেখছে দেশ Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ তিন দশকে সবচেয়ে উষ্ণ অক্টোবর দেখছে দেশ 05 Oct, 2016 বছরের এই সময়টায় আবহাওয়া থাকে বেশ আরামদায়ক। কমতির দিকে থাকে তামপাত্রা। তবে এই অক্টোবর এই দিক থেকে ব্যতিক্রম। আবহাওয়া অধিদপ্তরের পরিসংখ্যান বলছে, গত ৩০ বছরে অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে এত গরম পড়েনি কখনও। গত কয়েক দিন ধরেই প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস করছে মানুষ। ভাদ্রের তালপাকা গরমের মতোই ভেতরে ভেতরে সেদ্ধ হচ্ছে নগরবাসী। দিন আর রাতের তামপাত্রার ব্যবধান অল্প থাকায় সব সময়ই থাকে ভ্যাপসা গরম। আমজাদ হোসেন। রাজধানীর মগবাজারের বাসিন্দা। দিনে যেমন বাইরে রোদে পুড়ে গরমে হাঁসফাঁস করেন। রাতেও একই রকম গরমের ভোগান্তি পোহাতে হয় তাকে। এই প্রতিবেদককে বলেন, “ভাই কি আর বলুম, গরমের অস্বস্তি রাতেও কাটছে না। দিনেরাতে সমানে গরম। শিশুদের অবস্থা আরও বেগতিক।” বাসাবো থাকেন নাজমুল হোসেন। তিনি জানালেন একই কথা। বললেন, “এই সময় তো আবহাওয়া এরকম হওয়ার কথা নয়। গরমে টেকা দায়।” মঙ্গলবার তামপাত্রা ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অথচ গত ৩০ বছরে গড় তামপাত্রা ৩৩ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। অর্থাৎ গড় তামপাত্রার চেয়ে এদিনের তামপাত্রা দুই ডিগ্রি বেশি। কেবল তামপাত্রা নয়, বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণও বেশি। এ কারণে আদ্রতার পরিমাণ ৭৬ থেকে ৮৫ শতাংশ। এ কারণেই গরম বেশি অনুভূত হচ্ছে। এই পরিস্থিতি আরও দুই একদিন থাকবে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অফিস। তবে শিগগির বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। এরপর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। আবহাওয়াবিদ আবুল কালাম মল্লিক ঢাকাটাইমসকে জানান, ‘অক্টোবরে মাসে মৌসুমি বায়ূ প্রবাহিত হয়। এ কারণে তাপমাত্রা বেশি হওয়ার কথা নয়। কিন্তু এবার জলীয় বাষ্প বেড়ে গেছে। আর মানুষের শরীরের অভ্যন্তরীণ তাপমাত্রা ও তলীয় বাষ্পের তাপমাত্রা বিশে অস্বস্তিকর গরমের সৃষ্টি হয়েছে।’ এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘আমাদের শরীরের চামড়ার ভেতরের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াম আর চামড়ার বাইরের তাপমাত্রা ৩২ থেকে ৩৩ পর্যন্ত। আর বায়ূমণ্ডলের স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৩৪ থেকে ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত। সবকিছু মিলিয়ে এই সময়ে বায়ূমণ্ডলের তাপমাত্রা বেশি হওয়ায় উভয় তাপমাত্রা মিলিয়ে অস্বস্তিকর গরম পড়ছে।’ কতদিন এই পরিস্থিতি থাকবে-জানতে চাইলে এই আবহাওয়াবিদ বলেন, ‘বৃহস্পতিবার থেকে কয়েকদিন বৃষ্টিপাত হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বৃষ্টি হলে তাপমাত্রা স্বাভাবিক হয়ে যাবে।’ আবহাওয়া অফিস বলছে, মঙ্গলবার ঢাকার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছিল ২৭ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আর সর্বোচ্চ ছিল ৩৫ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। আগের দিন সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিল ৩৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। ঢাকাটাইমস প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 23 Sep, 2016 বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 24 Aug, 2016 বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প, আতঙ্ক 20 May, 2016 কতটা শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু? 18 May, 2016 ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ >> দেশ পরিণত হবে মরুভূমিতে 14 May, 2016 বজ্রাঘাত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা 02 May, 2016 কালও বৃষ্টি হতে পারে 27 Apr, 2016 উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ, হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদী 17 Apr, 2016 বিশ্বজুড়ে ঘনঘন ভূমিকম্প, বড় কম্পনের হুঁশিয়ারি শীর্ষ বিজ্ঞানীর 17 Apr, 2016 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধেয়ে আসছে আকস্মিক বন্যা 16 Apr, 2016 চারটি তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা 22 Mar, 2016 পানি সংকটের ভয়াবহতা বাড়ছে 17 Mar, 2016 যমুনায় হাঁটুজল 23 Feb, 2016 তলিয়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-চট্টগ্রাম! 05 Feb, 2016 তিস্তার সব পানিই নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, এদেশে এখন শুধু বালুচর 29 Jan, 2016 পঞ্চগড়ের পথে পথে গোলাপি-বেগুনি রডোডেন্ড্রনের বাহার 26 Jan, 2016 যানজটে শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভোগে ৭৩% মানুষ 05 Jan, 2016 ২৬ মের মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে? 03 Dec, 2015 ফের সুন্দরবন বিপর্যয়ের শঙ্কা : ৭৪৫ টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে চরে আটকা এমভি শোভন 10 Nov, 2015 কৃষির হুমকি আফ্রিকান শামুক 13 Sep, 2015 ৮০০ বাঁধ তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে! 08 Sep, 2015 মানুষকে ছায়া দেওয়াই যাঁর নেশা 02 Sep, 2015 শুক্রবার থেকে আরো বৃষ্টি! 24 Aug, 2015 ভিডিও >> মরুকরণের দিকে যাচ্ছে ঢাকা! 22 Aug, 2015 এক্সক্লুসিভ ভিডিও >> বিমানের উপর বজ্রপাত পড়লো যেভাবে 14 Aug, 2015 সালফারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাতাস 31 Jul, 2015 ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’: নামকরণের নেপথ্যে 30 Jul, 2015 ঝড়ের তীব্র বেগে উড়ে গেলো মানুষ! 30 Jul, 2015 ভিডিও >> টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ 29 Jul, 2015 সাগরে গভীর নিম্নচাপ>>৩-৪ ফ‍ুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা;আতঙ্কে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ 23 Jul, 2015 ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প >> ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে বাংলাদেশে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:ব্রিটিশ গণমাধ্যমে ইংলিশ ক্রিকেটারদের সমালোচনা Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> খেলা ব্রিটিশ গণমাধ্যমে ইংলিশ ক্রিকেটারদের সমালোচনা 11 Oct, 2016 দীর্ঘ প্রতিক্ষার পর শুরু হওয়া বাংলাদেশ-ইংল্যান্ড সিরিজ নিয়ে উত্তেজনা থাকাটা স্বাভাবিক। কিন্তু দ্বিতীয় ওয়ানডে-তে যে ঘটনার জন্ম হল- তা হয়ত কারো কাম্য ছিল না। টান টান উত্তেজনার এই ম্যাচে ইংলিশ অধিনায়ক বাটলার একাই দলকে অনেক দূর নিয়ে যাচ্ছিলেন। তাই তার উইকেটটি বাংলাদেশের জন্য জরুরি ছিল। ২৮তম ওভারে সে কাঙ্ক্ষিত উইকেটটি পান তাসকিন। তাও নাটকীয়তার পর। ফলে উদযাপনটা বাধভাঙা ছিল, যা একদমই পছন্দ হয়নি বাটলারের। তেড়ে এলেন মাশরাফিদের দিকে। পরে অ্যাম্পায়াররা পরিস্থিতি স্বাভাকি করলেন। এরপর ম্যাচ শেষে তামিম ইকবালের সাথে বিবাদে জড়ালেন ইংলিশ অলরাউন্ডার বেন স্টোকস। এই দুটি ঘটনায়ই উঠে এসেছে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে। পত্রিকাগুলো কড়া সমালোচনা করেছেন ইংলিশ অধিনায়ক জস বাটলার এবং সহঅধিনায়ক বেন স্টোকসের। ডেইলি মেইল লিখেছে, অনাকাঙ্ক্ষিত দৃশ্যের অবতারণা করে বাংলাদেশের কাছে হারলো ইংল্যান্ড। টেলিগ্রাফ লিখেছে, ইংল্যান্ড দ্বিতীয় ওয়ানডে হারার পর বাটলার ও স্টোকস বাংলাদেশের সাথে হাতাহাতিতে জড়িয়েছে। বিবিসি লিখেছে, ব্যাটসম্যানদের ব্যর্থতায় দ্বিতীয় ওয়ানডেতে হারলো ইংল্যান্ড। বাংলাদেশের কাছে হেরে হতাশ দলের অধিনায়ক জস বাটলার। এছাড়া ব্রিটিশ দৈনিক গার্ডিয়ান ম্যাচ নিয়ে দুটি প্রতিবেদন করেছে। একটিতে বলেছে, মাশরাফি মর্তুজার নেতৃত্বে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে সিরিজে সমতায় ফিরলো বাংলাদেশ। তারা আরও লিখেছে, প্রায় একহাতে ম্যাচ ধরে রাখা বাটলার ও তার উদ্দীপ্ত মেজাজকে ধরিয়ে জয় তুলে নেয় বাংলাদেশ। দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট লিখেছে, অধিনায়ক জস বাটলালের একার লড়াই ব্যর্থ করে দিয়ে ম্যাচ জিতে নিয়েছে বাংলাদেশ। একই সঙ্গে বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফির বীরত্বের কথাও স্বীকার করেছে পত্রিকাটি। এদিকে বাটলারের আউটকে কেন্দ্র করে উত্তেজনার ঘটনায় বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও সাব্বির রহমানের ম্যাচ ফির ২০ শতাংশ জরিমানা করেছে ক্রিকেটের নিয়ন্ত্রক সংস্থা আইসিসি। আর ইংলিশ অধিনায়ক বাটলারকে তিরস্কার করা হয়েছে। উৎসঃ নয়াদিগন্ত প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 13 Sep, 2015 মামলা নিষ্পত্তির আগে ক্রিকেট খেলতে পারবেন না শাহাদাত! 11 Sep, 2015 সাময়িক নিষিদ্ধ হতে পারেন শাহাদাত! 08 Aug, 2015 সুন্দরবনে ফিরছেন টাইগার! 25 Jun, 2015 ভারতের মাটিতে এবার কি খেলতে পারবে বাংলাদেশ? 04 Nov, 2016 বিপিএলের দ্বিতীয় ম্যাচের টসও হলো না বৃষ্টিতে 04 Nov, 2016 বিপিএলের শুরুতেই বৃষ্টির বাগড়া 02 Nov, 2016 মিরাজের বাড়ি তৈরি করে দিচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী 02 Nov, 2016 সুখবর দিলেন মুস্তাফিজ 31 Oct, 2016 শুধু বোলিং নয় ভবিষ্যতে ব্যাটিংয়েও প্রতিভা দেখাবো: মিরাজ 31 Oct, 2016 ইত্তেফাক মালিকের কাছ থেকে পাঁচ কোটি টাকা আদায়ের প্রতিশ্রুতি প্রধানমন্ত্রীর 31 Oct, 2016 অটো চালকের ছেলের হাতে ইংল্যান্ড হেরে গেল : ভারতীয় মিডিয়ায় মিরাজ 30 Oct, 2016 'ভাগ্য ভালো আমরা ২-০ তে টেস্ট সিরিজ হারিনি' 30 Oct, 2016 ম্যান অফ দি ম্যাচ ও সিরিজ দুটিই 'মিরাজ' 30 Oct, 2016 মিরাজ-জাদুতে বাংলাদেশের ঐতিহাসিক জয় 30 Oct, 2016 ইংল্যান্ডের দুর্দান্ত শুরু 30 Oct, 2016 ইংল্যান্ডকে ২৭৩ রানের টার্গেট দিলো বাংলাদেশ 29 Oct, 2016 দ্বিতীয় ইনিংসেও ধস-রোগে বাংলাদেশ 29 Oct, 2016 আবার মিরাজ-তাইজুলের ভেলকি, শেষ হলো ইংল্যান্ডের ইনিংস 29 Oct, 2016 যেখানে মিরাজই একমাত্র 28 Oct, 2016 গ্যালারিতে কাঁদলেন মুশফিকের মা! 28 Oct, 2016 পুরনো চেহারায় বাংলাদেশ 28 Oct, 2016 প্রথম সেশনে বাংলাদেশের ১১৭ রানের জুটি 28 Oct, 2016 টস জিতে বাংলাদেশের ব্যাটিংয়ের সিদ্ধান্ত 26 Oct, 2016 এবার প্রতিবন্ধী ভক্তের স্বপ্নপূরণ করে আবার নায়ক হলেন মাশরাফি 24 Oct, 2016 চট্টগ্রাম টেস্টে বাংলাদেশের ভুলগুলো কী ছিল? 24 Oct, 2016 ৩ বলেই স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের! 22 Oct, 2016 স্বপ্নভঙ্গ বাংলাদেশের ২৭ রানে শেষ ৬ উইকেট 21 Oct, 2016 মিরাজ-তাইজুলের ঘূর্ণিতে ২৯৩ রানে শেষ ইংল্যান্ড 20 Oct, 2016 চলছে সাকিব-মেহেদির ভেলকি, ইংলিশদের পঞ্চম উইকেটের পতন 15 Oct, 2016 একের পর এক সাব্বিরের আঘাতে বিপর্যস্ত ইংল্যান্ড Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: বাংলাদেশে সরকারের কাফেলা নিরাপদেই চলছে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম বদরুদ্দীন উমর test@gmail.com বাংলাদেশে সরকারের কাফেলা নিরাপদেই চলছে 02 October 2016, Sunday বাংলাদেশের সমগ্র শাসক শ্রেণী, বিশেষত তাদের সরকার কতখানি গণবিচ্ছিন্ন, তা গণতান্ত্রিক নামে ঘোষিত দুনিয়ার দেশগুলোতে অতি সামান্য ক্ষেত্রেই দেখা যায়। জনগণের প্রতি অসামান্য ঔদাসীন্যও এই বিচ্ছিন্নতার একটা দিক। এজন্য দেখা যায় যে, এদেশের মানুষ অসংখ্য সমস্যায় জর্জরিত থাকলেও এবং এসব সমস্যা প্রতিদিন বৃদ্ধি পেতে থাকলেও এসবের প্রতি নজর দেয়ার কোনো ব্যাপারে সরকারের নেই। সরকারি লোকদের কথাবার্তা শুনলে মনে হয়, এদেশে সরকারবিরোধীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার ছাড়া এদের আর কোনো বক্তব্য নেই। তাদের ওপর নানাভাবে আক্রমণ করা ছাড়া এদের আর কোনো কাজ নেই। এদের আচরণের আরেকটি দিক হচ্ছে, নিজেরা ক্ষমতায় থাকা সত্ত্বেও দেশে নানাবিধ সমস্যা ও দুর্ঘটনার বিষয়ে নিজেদের দায়-দায়িত্ব সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে গিয়ে বা ধামাচাপা দিয়ে সবকিছুর জন্যই বিরোধীদের দায়ী করা। এটা যে শুধু দায়িত্বহীনতা তাই নয়, এর মধ্যে কাপুরুষতারও যথেষ্ট পরিচয় আছে। নিজেরা জনগণ থেকে সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন থাকা সত্ত্বেও এদের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ নিয়ন্ত্রণের অধীন গণমাধ্যমকে ব্যবহার করে এরা নিজেদের মাহাত্ম্য এমনভাবে প্রচার করতে থাকে যাতে মনে হয় এরা দেশের সব সমস্যা, জনগণের জীবনের সব সংকটের সমাধান করে এমন গৌরব অর্জন করেছে যে, এরা অভিনন্দনযোগ্য। এই অভিনন্দনের ব্যবস্থা জনগণ করে না। এরা নিজেদের জন্য এই অভিনন্দন ও সংবর্ধনার ব্যবস্থা নিজেরাই করে। এই সংবর্ধনা ঘটা করে অনুষ্ঠান এখন বাংলাদেশে এক নিয়মিত ব্যাপার। সরকারের শীর্ষ ব্যক্তিদের নানা তুচ্ছ কারণে ও অকারণে কোনো ছুতা বের করে অভিনন্দন ও সংবর্ধনার যেসব কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান দেখা যায় তার মধ্যে গ্রাহ্যতা তো বটেই, এমনকি সুরুচির কোনো পরিচয় থাকে না। আত্মসম্মান ও সুরুচির অভাব যদি না থাকত, তাহলে দিনের পর দিন এরা নিজেরা এসব অভিনন্দন, সম্মাননা, সংবর্ধনা ও আত্মপ্রচারণার ঢাকঢোলের ব্যবস্থার চিন্তা কখনও করত না। বলাই বহুল্য, এসব সরকারি কর্মের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নেই। এক্ষেত্রে এদের অনুষ্ঠানগুলোতে মানুষের যে সমাবেশ দেখা যায় তার মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ততা বা এদের সাংগঠনিক শক্তির কোনো পরিচয় থাকে না। এ সবকিছুই হয় টাকার জোরে। টাকা দিয়ে লোক ভাড়া করে সভা-সমিতিতে নিয়ে আসা শাসক শ্রেণীর বড় দলগুলোর এক পরিচিত ব্যাপার। মাথাপিছু যে পরিমাণ টাকা দিয়ে আগে লোক আনা যেত, এখন সেটা বৃদ্ধি পেয়েছে। এক একজনের জন্য এখন দু-তিনশ’ টাকা পর্যন্তও দিতে হয় ক্ষেত্রবিশেষে। কিন্তু তাতে এদের অসুবিধা নেই। কারণ দুর্নীতির মাধ্যমে এদের হাতে টাকা-পয়সা, ধনদৌলত আসতেই থাকে। সরকারি লোকদের চাটুকারিতার জন্য এদেশের প্রভাবশালী শিক্ষিত মধ্যবিত্তের একটা বেশ বড় অংশকে নানাভাবে পাইয়ে দেয়ার ব্যবস্থা আছে। এক ধরনের ঘুষ আর কী। এসব শিক্ষিত মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীর মধ্যে আছেন লেখক, শিল্পী, সাংবাদিক, সংস্কৃতিকর্মী ও রাজনৈতিক ব্যক্তি। এরা শাসক শ্রেণী ও সরকারের সামাজিক ভিত্তি ও খুঁটি হিসেবেই কাজ করেন। ছাত্র ও যুব সমাজের একটা বড় অংশও এর অন্তর্ভুক্ত। সমাজে এদের প্রভাব এক ধরনের নিয়ন্ত্রণের কাজ করে। যার ফলে সাধারণ অবস্থায় যে সমালোচনা সরকারের বিরুদ্ধে হওয়ার কথা, সেটা হয় না। এদের মধ্যে কেউ কেউ সরকারের কিছু সমালোচনা কখনও-সখনও করলেও একই সঙ্গে সরকার ও শাসক শ্রেণীর শীর্ষ ব্যক্তিদের এটা-ওটা কাজের প্রশংসা করে নিজেদের সমালোচনার সামান্য ধারকেও ভোঁতা করেন। এর ফলে কার্যত সরকারের এসব সমালোচনা ধরি মাছ না ছুঁই পানির মতোই দাঁড়ায়। মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবীদের এই ভূমিকা জনগণের মধ্যে শাসক শ্রেণী ও সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ ও প্রতিবাদকে সাহায্য ও শক্তিশালী না করে তাকে দমন করার ক্ষেত্রেই ভূমিকা রাখে। এর সঙ্গে সরকারের দমনপীড়ন যুক্ত হয়ে দেশে এখন এক ‘শান্তির’ পরিবেশ সৃষ্টি করে, যাকে কবরের শান্তি ছাড়া আর কিছুই বলা যায় না। এর থেকে মনে হয় না যে, সমাজে নিপীড়িত জনগণের মধ্যে কোনো ক্ষোভ আছে, কোনো সম্ভাবনাময় আন্দোলন ও সংগ্রামের শর্ত বিরাজ করছে। এই মধ্যশ্রেণীর সহযোগিতা ও গণমাধ্যমের ওপর সরকার এবং এই শ্রেণীর আধিপত্য ও নিয়ন্ত্রণের কারণে দেশে নিপীড়নমূলক শাসনের বিরুদ্ধে এবং দেশের স্বার্থ ও নিরাপত্তা পর্যন্ত বিপন্ন হওয়ার বিরুদ্ধে কোনো উল্লেখযোগ্য আন্দোলন নেই। কিছু আন্দোলন থাকলেও সরকারি আক্রমণের মুখে তা টিকিয়ে রাখা অসম্ভব বা সংকটজনক হয়। জনগণের প্রতিরোধকে দমনপীড়নের মাধ্যমে প্রতিহত করার ক্ষেত্রে সরকার যে শুধু পুলিশ, র‌্যাব ইত্যাদি সশস্ত্র বাহিনীকেই ব্যবহার করে তা নয়, ছাত্র ও যুব সমাজের মধ্যে তাদের প্রতিপালিত গুণ্ডা বাহিনীকেও এরা বেশ সাফল্যের সঙ্গে ব্যবহার করে। এর একেবারে সদ্য দৃষ্টান্ত হল, গত ৩০ সেপ্টেম্বর সুন্দরবন রক্ষার জন্য ‘সুন্দরবন বাঁচাও সাইকেল মিছিলের’ ওপর আওয়ামী লীগের ছাত্র বাহিনীর আক্রমণ। পুলিশের উপস্থিতিতে ও সহায়তায় তারা এই মিছিলের ওপর হামলা করে তাদের ছত্রভঙ্গ করে। মধ্যবিত্ত বুদ্ধিজীবী, গণমাধ্যম এবং পুলিশ ও সরকারি গুণ্ডা বাহিনীর সাহায্য-সহযোগিতায় দমননীতি সাফল্যের সঙ্গে কার্যকর করে চলার কারণে দেশে জনগণের হাজারও সমস্যা থাকলেও সেসবের সুরাহা হওয়ার কোনো সম্ভাবনা বর্তমান শাসন ব্যবস্থায় নেই। মূল্য বৃদ্ধি অনিয়ন্ত্রিতভাবে নিয়মিত হচ্ছে। সংবাদপত্রের রিপোর্ট অনুযায়ী, সড়ক দুর্ঘটনায় দেশে ২০ হাজারের ওপর মানুষ প্রতি বছর মৃত্যুবরণ করছেন। জনগণের চিকিৎসার কোনো ব্যবস্থা নেই, গরিবদের স্কুলগুলোতে ছাত্রদের শিক্ষার উপযুক্ত ব্যবস্থা নেই, সাধারণভাবে জনজীবনে নিরাপত্তা বলে কিছু নেই, কিন্তু তা সত্ত্বেও দেশে শান্তি বিরাজ করছে। শাসকশ্রেণী ও সরকারের লোকরা নিজেদের জন্য সংবর্ধনা, অভিনন্দন, সম্মাননা ও পুরস্কারের ব্যবস্থা করে তাদের প্রচার চালিয়ে ভালোই আছে। জনগণ এবং শাসক শ্রেণী ও তাদের সরকারের মধ্যে চরম বিচ্ছিন্নতা এবং জনস্বার্থের প্রতি সরকারের চরম ঔদাসীন্য সত্ত্বেও দেশের বুদ্ধিজীবী মহলের শক্তিশালী অংশের সমর্থন ও বৈদেশিক পৃষ্ঠপোষকতার জোরে তাদের কাফেলা নিরাপদে এবং অপ্রতিহতভাবে চলছে। বদরুদ্দীন উমর : সভাপতি, জাতীয় মুক্তি কাউন্সিল উৎসঃ যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 01 Nov, 2016 রাজনীতির সেকাল ও একাল 30 Oct, 2016 আওয়ামী লীগের জাতীয় সম্মেলন প্রসঙ্গে 23 Oct, 2016 বাংলাদেশে ‘উন্নতির’ চালচিত্র 19 Oct, 2016 ভারত-পাকিস্তান সম্পর্ক অবনতির রাজনৈতিক তাৎপর্য 16 Oct, 2016 দেশে যা হচ্ছে 27 Sep, 2016 কাশ্মীরি জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রাম প্রসঙ্গে 18 Sep, 2016 বাংলাদেশে জঙ্গি তৎপরতা 11 Sep, 2016 গরু সমাচার 04 Sep, 2016 বন্ধুত্বের বাঁধভাঙা পানি 28 Aug, 2016 বাংলাদেশে এসব কী হচ্ছে? 21 Aug, 2016 জঙ্গি দমনের নামে আইনশৃংখলা বাহিনীর তৎপরতা 14 Aug, 2016 বাংলাদেশে কারারুদ্ধ ইতিহাস চর্চা 07 Aug, 2016 দুর্নীতির সম্প্রসারণশীল হাত 31 Jul, 2016 ‘করিতে ধুলা দূর, জগৎ হল ধুলায় ভরপুর’ 25 Jul, 2016 সাম্রাজ্যবাদই দুনিয়াজুড়ে সন্ত্রাসী তৎপরতার সংগঠক 03 Jul, 2016 বাংলাদেশ ভালো আছে! 27 Oct, 2015 ক্ষুব্ধ হাতির প্রতিক্রিয়া এবং বিপন্ন পরিবেশ 13 Oct, 2015 সরকার নিজেও সন্ত্রাস করছে 04 Oct, 2015 বিরোধীদলীয় সুবিধাবাদীদের আওয়ামী লীগে যোগদান প্রসঙ্গে 20 Sep, 2015 ইউরোপে শরণার্থী সমস্যা মার্কিনসহ ইউরোপীয় সাম্রাজ্যবাদীদেরই চক্রান্ত 15 Sep, 2015 ছাত্র আন্দোলন গণতান্ত্রিক আন্দোলন চাঙ্গা হওয়ার শর্ত সৃষ্টি করছে 13 Sep, 2015 প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদের টিউশন ফির ওপর ভ্যাট ধার্য প্রসঙ্গে 06 Sep, 2015 আন্তর্জাতিক শরণার্থী সমস্যা সাম্রাজ্যবাদেরই সৃষ্টি 04 Sep, 2015 কে কাকে কখন কোন দিক থেকে মারবে নিশ্চয়তা নেই 30 Aug, 2015 সরকারের করনীতি ও দুর্নীতির সম্পর্ক অবিচ্ছেদ্য Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: সন্ত্রাসের ‘বড়ভাই’ বিএনপি হলেও ‘বাপ’ জামায়াত Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম শাহরিয়ার কবির test@gmail.com সন্ত্রাসের ‘বড়ভাই’ বিএনপি হলেও ‘বাপ’ জামায়াত 30 October 2015, Friday আমরা যখন বলি দক্ষিণ এশিয়া উপমহাদেশে জামায়াতে ইসলামী সকল মৌলবাদী সন্ত্রাসের জন্মদাতা, তখন কেউ বুঝে কেউ না বুঝে এটিকে ‘আপ্তবাক্য’ বলেন। জামায়াতের সঙ্গে যারা সহবাস করেন বিপদে-আপদে জামায়াতকে রক্ষা করা এবং জামায়াতের সব অপরাধ শুধু আড়াল করা নয়, অপরাধ থেকে দায়মুক্তি দেয়াও তাদের রাজনীতির অন্তর্গত। বাংলাদেশে জামায়াতের ‘বড়ভাই’ বিএনপির জন্মদাতা জেনারেল জিয়া একই সঙ্গে জামায়াতেরও প্রতিষ্ঠাতা। জিয়ার কারণেই বাংলাদেশের মূল সংবিধানে নিষিদ্ধ ঘোষিত জামায়াতে ইসলামী এবং তাদের সমচরিত্রের মৌলবাদী ড্রাকুলারা মুক্তিযুদ্ধের চেতনার রক্ত পান করে বাংলাদেশের রাজনীতিতে পুনর্জন্ম লাভ করেছে। ধর্মের নামে রাজনীতি ও সন্ত্রাসকে বৈধতা প্রদানের জন্যই জেনারেল জিয়া ৩০ লাখ শহীদের জীবনের বিনিময়ে অর্জিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় ভাস্বর সংবিধান থেকে মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস ও চেতনা খারিজ করেছিলেন। উদ্দেশ্য ছিল ’৭১-এর পরাজয়ের গ্লানি মুছে ফেলে বাংলাদেশকে আবার পাকিস্তানের মতো মৌলবাদী সন্ত্রাসী রাষ্ট্রে পরিণত করা। গত এক মাসে দুই বিদেশী নাগরিক হত্যা, ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের ওপর হামলা ও হত্যা, মাজারের খাদেম হত্যা, খ্রিস্টান ধর্মযাজক হত্যা চেষ্টা, শিয়াদের মহরমের শোভাযাত্রায় গ্রেনেড-বোমা হামলা ও হত্যাকাণ্ড- সবই জেনারেল জিয়া কর্তৃক প্রোথিত বিষবৃক্ষের ফল, যে বিষবৃক্ষটির নাম জামায়াতে ইসলামী তথা ধর্মের নামে রাজনীতি। যে কোন নরহত্যার একটি উদ্দেশ্য থাকে। সাধারণভাবে যে সব হত্যাকা- সামাজিক অপরাধের অন্তর্গত সেখানে হত্যার উদ্দেশ্য খোঁজা হয় নিহতের সঙ্গে ঘাতকের ব্যক্তিগত বৈরিতা থেকে, যা হতে পারে বৈষয়িক, পারিবারিক, সামাজিক অথবা একান্তই ব্যক্তিগত। রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে যে সব হত্যাকা সংঘটিত হয় সেখানে ব্যক্তিগত বিরোধের কোন সুযোগ নেই। শতকরা ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে যাকে হত্যা করা হয় ঘাতক তাকে চিনে না। নেতা, ওস্তাদ বা বড় ভাইয়ের নির্দেশে এসব হত্যাকা- ঘটে। কখনও বৈষয়িক প্রাপ্তিযোগ থাকে বটে, তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অক্লেশে বেহেশতে যাওয়ার প্রলোভনেই মৌলবাদী ঘাতকরা অজানা-অচেনা ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠানের ওপর হামলা করে, নরহত্যা করে, রাষ্ট্রীয় সম্পদ ধ্বংস করে ইমানি দায়িত্ব পালন করে। ইসলামকে বলা হয় ‘শান্তি’ ও ‘বিনম্র্রতা’র ধর্ম। জামায়াতে ইসলামী দাবি করে তাদের দলের প্রতিষ্ঠাতা মওলানা আবুল আলা মওদুদী কোরান ও ইসলামের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন যারা তা মানবে না তারা মুসলমান নয়, কাফের এবং হত্যার যোগ্য। কোরানের বহু আয়াতে পরমতসহিষ্ণুতার কথা বলা হয়েছে, ধর্মের নামে বাড়াবাড়ি বারণ করা হয়েছে; কিন্তু মওদুদী কোরানের যে ব্যাখ্যা দিয়েছেন সেখানে জীঘাংসা, সন্ত্রাস এবং রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে হত্যা সবই বৈধ। কোরানে ভিন্নমত পোষণকারীদের সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘যাহারা দীন সম্পর্কে নানা মতের সৃষ্টি করিয়াছে এবং বিভিন্ন দলে বিভক্ত হইয়াছে তাহাদের কোন দায়িত্ব তোমার নয়, তাহাদের বিষয় আল্লাহ্্র ইখ্্তিয়ারভুক্ত। (সূরা : আন’আম, আয়াত ১৫৯) মওদুদী এবং তাদের অনুসারীরা আল্লাহ ও বান্দার এখতিয়ারের সীমারেখা মানেন না। ইসলাম সম্পর্কে ভিন্নমত পোষণকারীদের সম্পর্কে মওদুদী বলেছেন, ‘আমাদের জগতে আমরা কোন মুসলমানকে যেমন ধর্ম পরিবর্তন করতে দিই না, তেমনি অন্য ধর্মাবলম্বীকে তার ধর্ম প্রচারও করতে দিই না। (মুরতাদ কি সাজা ইসলামী কানুন মে’, ইসলামিক পাবলিকেশন লি., লাহোর, ১৯৮১, ৮ম সংস্করণ, পৃষ্ঠা. ৩২) গত কয়েক মাসে ভিন্নমতাবলম্বী মুক্তচিন্তার ব্লগারদের ধারাবাহিক হত্যাকা- থেকে শুরু করে দুর্গাপূজার ম-পে কিম্বা শিয়াদের তাজিয়া মিছিলে হামলা ও হত্যাকা- জামায়াতের এই দর্শনেরই অভিব্যক্তি। জামায়াতে ইসলামীর প্রতিষ্ঠাতা ও আদর্শিক গুরু মওদুদী এবং তার সমসাময়িক মিসরের ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’-এর হাসান আল বান্না ও সাঈদ কুত্্ব রাষ্ট্রক্ষমতা করায়ত্ত করার জন্য যেভাবে ইসলামের নামে যাবতীয় সন্ত্রাস ও হত্যাযজ্ঞকে বৈধতা দিয়েছেন বর্তমান বিশ্বে ‘আল কায়দা’ ও ‘আইএস’-এর সকল কর্মকা- তারই আলোকে ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ করতে হবে। ‘আল কায়দা’ ও ‘আইএস’-এর প্রতিষ্ঠাতা ও নীতিনির্ধারকরা নিজেদের গড়ে তুলেছেন মওদুদী, হাসান বান্না আর সাঈদ কুত্্বদের রচনাবলীর নির্দেশনা অনুযায়ী। দুই বিদেশী হত্যাকা-ের পর আমেরিকার একটি ভাড়াখাটা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম যখন তাৎক্ষণিকভাবে এর সঙ্গে ‘আইএস’ যুক্ত বলে জানিয়েছে এবং আমাদের সরকারের পক্ষ থেকে বাংলাদেশে ‘আইএস’-এর কোন অস্তিত্ব নেই বলা হয়েছে দুটোই আমাদের কাছে অগ্রহণযোগ্য মনে হয়েছে। এ কথা সত্যি যে, বাংলাদেশে ‘আইএস’ বা ‘আল কায়দা’ সাইনবোর্ড ঝুলিয়ে কোন দফতর আনুষ্ঠানিকভাবে স্থাপন করেনি। তবে ‘আল কায়দা’ ও ‘আইএস’-এর দফতর না থাকলেও তাদের গুরু জামায়াত এবং গুরুভাইরা তো দাপটের সঙ্গেই অবস্থান করছে। যে দেশে ‘জামায়াতে ইসলামী’ বা ‘মুসলিম ব্রাদারহুড’ আছে সে দেশে ‘আল কায়দা’ বা ‘আইএস’-এর আলাদা করে ‘রিক্রুটিং অফিস’ খোলার দরকার নেই। পাকিস্তান ও আফগানিস্তানসহ মধ্যপ্রাচ্যে এবং বিশ্বের মুসলিম অধ্যুষিত দেশসমূহে ‘আল কায়দা’ ও ‘আইএস’ মওদুদী-বান্না-কুত্্ব্্দের এজেন্ডাই বাস্তবায়ন করছে। বাংলাদেশে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন মহাজোট সরকার ২০০৯ সালের জানুয়ারিতে দায়িত্ব গ্রহণের পর যখনই নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ’৭১-এর যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তখন থেকে জামায়াত এই বিচার বানচাল করার জন্য দেশে ও বিদেশে বহুমাত্রিক তৎপরতা শুরু করেছে। শত শত কোটি টাকা ব্যয় করে আমেরিকা ও ইউরোপে তারা বহু লবিস্ট তথা তদবিরকারী প্রতিষ্ঠান ও ব্যক্তি ভাড়া করেছে, যাদের কাজ হচ্ছে তাদের সরকারদের বোঝানো- ১. যে আইনে বাংলাদেশে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার হচ্ছে সেটি এবং সে আইনের অধীনে গঠিত ট্রাইব্যুনাল আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন নয়, ২. আওয়ামী লীগ রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে শায়েস্তা করার জন্য যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করছে, ৩. বঙ্গবন্ধু যুদ্ধাপরাধীদের ক্ষমা করে দিয়েছিলেন, যে কারণে তাদের নতুন করে বিচারের সুযোগ নেই, ৪. যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করতে হলে ইউরোপের আন্তর্জাতিক আদালতে যেতে হবে বিচারের স্বচ্ছতা ও মান নিশ্চিত করার জন্য এবং ৫. চল্লিশ বছর পর এই বিচার সমাজে অস্থিরতা ও সহিংসতা সৃষ্টি করবে এবং আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন বাধাগ্রস্ত হবে ইত্যাদি। জামায়াতের এসব মিথ্যাচারের জবাব বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ফোরামে আমরা দিয়েছি। সমস্যা হচ্ছে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলনে নিজ খরচে যেতে আমাদের যেখানে নাভিশ্বাস ওঠে সেখানে পাকিস্তানের সামরিক গোয়েন্দা সংস্থা আইএসআই এবং সৌদি আরব ও মধ্যপ্রাচ্যের অর্থে বলীয়ান হয়ে জামায়াত শত শত আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজন করছে, রাষ্ট্রবিরোধী তৎপরতা চালাবার জন্য লবিস্ট ভাড়া করছে, ইউরোপীয় পার্লামেন্টে শুনানির ব্যবস্থা করে মিথ্যার পর মিথ্যা উদগীরণ করছে। নাৎসি মতবাদের অনুসারী জামায়াত নাৎসি নেতা গোয়েবলসের মতো বিশ্বাস করে, একটি মিথ্যা শতবার বললে মানুষ তা সত্য বলে মেনে নেয়। ঢাকার আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে গত সাড়ে পাঁচ বছরে একুশটি মামলার রায় হয়েছে, দুজন প্রধান গণহত্যাকারীর মৃত্যুদ কার্যকর হয়েছে। বহু আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠান ও বিশিষ্ট ব্যক্তি এক সময় আইসিটির কট্টর সমালোচক হলেও এখন তারা বলছেন, এই বিচার বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ বিষয় এবং তা হচ্ছে আন্তর্জাতিক মান বজায় রেখে। ট্রাইব্যুনালে এ পর্যন্ত যাদের বিচার হয়েছে তাদের ভেতর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিএনপি নেতা সালাউদ্দিন কাদের চৌধুরী ও জামায়াত নেতা আলী আহসান মুজাহিদের মৃত্যুদ কার্যকার হওয়ার অপেক্ষায় আছে। গত জুলাইয়ে (২০১৫) ট্রাইব্যুনালের রায়ে এদের মৃত্যুদ দেয়ার পর থেকেই আমরা বলছি এটি রদ করার জন্য জামায়াত-বিএনপি এবং তাদের আন্তর্জাতিক মুরুব্বি ও ‘বড়ভাই’রা যা কিছু করা দরকার সবই করবে এবং তা করছেও। ইতালির নাগরিকের হত্যার সঙ্গে যারা জড়িত তাদের ভেতর মাঠ পর্যায়ের ঘাতকদের কয়েকজনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। গ্রেফতারকৃতরা আদালতে হলফনামায় বলেছে, তারা একজন বড়ভাইয়ের নির্দেশে এ হত্যাকা সংঘটিত করেছে। যে ‘বড়ভাই’র নামটি গণমাধ্যমে আমরা দেখেছি সেটি বিএনপির মহানগর নেতা কমিশনার কাইয়ুমের। যিনি এলাকার সন্ত্রাসীদের ‘বড়ভাই’ নামে পরিচিত। এটি গণমাধ্যমে প্রকাশের পর বিএনপির মুখপাত্র নজরুল ইসলাম খান বলেছেন, কোন ব্যক্তির হত্যাকাে র দায় তারা নেবেন না। এতকাল আমরা জানতাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল করার জন্য জামায়াত পশ্চিমে লবিস্ট নিয়োগ করেছে। ওয়াশিংটনের ‘ক্যাসেডি এ্যান্ড এ্যাসোসিয়েটস’ নামক লবিং প্রতিষ্ঠানকে জামায়াতের অন্যতম প্রধান নেতা মীর কাশিম আলী আড়াই কোটি টাকা দিয়েছেন যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের বিরুদ্ধে সে দেশে লবিং করার জন্য। ’৭১-এর গণহত্যার জন্য ট্রাইব্যুনাল এই জামায়াত নেতাকে মৃত্যুদ দিয়েছে। যেদিন এই কলামটি লেখা শুরু করেছি সেদিনই পত্রিকায় দেখলাম জামায়াতের কেবলা অনুসরণ করে একই উদ্দেশ্যে বিএনপিও ওয়াশিংটনে ‘একিন গাম্প স্ট্রাস...’ নামক একটি প্রতিষ্ঠানকে লবিস্ট নিয়োগ করেছে বাংলাদেশের যুদ্ধাপরাধীদের বিচার, বাণিজ্য নীতি মানবাধিকার লঙ্ঘন প্রভৃতি বিষয়ে সে দেশের সরকারী কর্মকর্তা, গণমাধ্যম লিঙ্ক ট্যাংক এবং অন্যদের কাছে বিএনপির পক্ষে কাজ করার জন্য। চুক্তির দলিল ইন্টারনেটে সুলভ হলেও বিএনপি যথারীতি বলছে তারা এ ধরনের কোন লবিস্ট নিয়োগ করেনি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার সম্পর্কে এতকাল বিএনপি বলেছে, তারাও বিচারের পক্ষে তা তবে তারা চায় ‘স্বচ্ছ বিচার’, এখন সরকার নাকি বিচারের নামে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করছে ইত্যাদি। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার বানচাল থেকে শুরু করে বিদেশে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ম্লান এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার বিনষ্ট করে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের ধারা প্রতিহতকরণের জন্য জামায়াত-বিএনপি দেশের অভ্যন্তরে যেভাবে একজোট হয়ে কাজ করছে, বহির্বিশ্বেও তা করছে। সর্বোচ্চ আদালতে মৃত্যুদ প্রাপ্ত জামায়াত নেতা মুজাহিদ ও বিএনপি নেতা সাকা চৌধুরীকে রক্ষার জন্য জামায়াত-বিএনপি মরিয়া হয়ে যা করছে তা দুই বিদেশীর হত্যাকা কিংবা শিয়াদের ওপর হামলার ভেতর সীমাবদ্ধ থাকবে এ কথা মনে করার কোন কারণ নেই। ২৮ অক্টোবর বিভিন্ন জাতীয় দৈনিক গ্রেফতারকৃতদের বয়ান ও গোয়েন্দা প্রতিবেদনের সূত্রে যে সব খবর বেরিয়েছে সেখানে বিমান ছিনতাই থেকে শুরু করে অনেক বড় আকারের সন্ত্রাসী হামলা, নাশকতা ও হত্যাকা জামায়াত-বিএনপির এজেন্ডায় রয়েছে। ২ নবেম্বর (২০১৫) সাকা, মুজাহিদের আপীলের রায়ের রিভিউ শুনানির দিন ধার্য হয়েছে। এ দিন তাদের আইনজীবীরা কী কৌশল অবলম্বন করবেন আমরা জানি না, তবে অতীতের অভিজ্ঞতা থেকে এটুকু বলতে পারি, শুনানি বিলম্বিত করার জন্য তারা সবই করবেন। সাকা চৌধুরী কতটা ক্ষমতাবান ট্রাইব্যুনালে তাদের অনুপ্রবেশ, বিচারপতির কম্পিউটার থেকে রায়ের খসড়া চুরি, মামলা চলাকালে প্রধান বিচারপতির সঙ্গে তার পরিবারের সদস্যদের দেখা করা থেকে শুরু করে তার সম্পর্কে পাকিস্তান এবং পশ্চিমের উদ্বেগের ঘটনা থেকে আমরা বলতে পারি মৃত্যুদ কার্যকর না হওয়া পর্যন্ত জামায়াত-বিএনপির সন্ত্রাস ও নাশকতা নব নবরূপে প্রতিভাত হবে, যদি না আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করে। আমাদের জন্য একটি স্বস্তির খবর প্রকাশিত হয়েছে ২৯ অক্টোবরের ‘প্রথম আলো’য়। পাবনার ঈশ্বরদীতে গির্জার যাজক লুক সরকারকে হত্যা চেষ্টার সঙ্গে যুক্ত জামায়াতের সহযোগী জঙ্গী সংগঠন জিএমবির কর্মী রাকিবুল ইসলামকে পুলিশের হাতে তুলে দিয়েছেন তারই জননী। বাংলাদেশে সন্ত্রাসের জন্মদাতা জামায়াত যেমন আছে তেমনি আছেন ঈশ্বরদীর আজমিরা খাতুনের মতো জননী। জামায়াত-বিএনপির বাংলাদেশবিনাশী এসব চক্রান্তের বিরুদ্ধে নাগরিক সমাজ ও গণমাধ্যমের সচেতনতা ও নজরদারি এ পর্যন্ত বহু বড় বিপর্যয় প্রতিহত করেছে বটে তবে ইসলামের দোহাই দিয়ে তাবৎ সন্ত্রাস ও নাশকতার জন্মদাতা জামায়াতের যাবতীয় কর্মকা এবং সংশ্লিষ্ট সকল প্রতিষ্ঠান যদি অবিলম্বে নিষিদ্ধ করা না হয় তাহলে শুধু বাংলাদেশ নয়, সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার আঞ্চলিক নিরাপত্তা হুমকির ভেতর থাকবে। ২০১৪ সালে ‘আইএস’ ও ‘আল কায়দা’ বাংলাদেশ ও মিয়ানমারসহ সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার তাদের কর্মকা সম্প্রসারিত করার ঘোষণা দিয়েছে তাদের আদর্শিক জন্মদাতা জামায়াতের ভরসায়। বাংলাদেশে কায়িকভাবে ‘আইএস’ নেই বলে সরকারের স্বস্তি পাওয়ার কোন কারণ নেই। যখন ‘আইএস’ ‘আল কায়দা’র জন্ম হয়নি তখনও ’৭১-এর মতো নৃশংসতম গণহত্যা সংঘটনের সক্ষমতা জামায়াতের ছিল। ২৯ অক্টোবর ২০১৫ পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 23 Aug, 2015 একুশ আগস্ট ট্র্যাজেডির ঘাতকরা আজও সক্রিয় 24 Apr, 2015 নববর্ষের অনুষ্ঠানে নারী নির্যাতন ॥ দায় কার, কে দায়ী 12 Apr, 2015 গণহত্যাকারী কামারুজ্জামানের ফাঁসি : এরপর কী 15 Sep, 2014 ‘১৯৭১ : ভেতরে বাইরে’ মুক্তিযুদ্ধের আজন্ম শত্রুদের জন্য মোক্ষম অস্ত্র 08 Sep, 2014 বাংলাদেশ ও দক্ষিণ এশিয়ায় আল কায়েদার নেটওয়ার্ক 26 Jul, 2014 গাজার গণহত্যা এবং খালেদা জিয়ার ওমরাহ-রাজনীতি 08 Apr, 2014 দেশে-বিদেশে জামায়াতের বহুমাত্রিক ষড়যন্ত্র Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:গাঁজা কি সৃজনশীলতা বাড়ায়? গবেষণায় মিলেছে ভয়ংকর তথ্য Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য গাঁজা কি সৃজনশীলতা বাড়ায়? গবেষণায় মিলেছে ভয়ংকর তথ্য 06 Oct, 2016 অনেকেরই ধারণা, গাঁজা সৃজনশীলতা বাড়ায়। আর এ কারণে সৃজনশীল কাজে উৎসাহী কিছু মানুষ গাঁজা গ্রহণ করেন। তবে বাস্তবে গাঁজা কী সৃজনশীলতা বাড়ায়? সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, এর বিপরীত চিত্র। এক প্রতিবেদনে বিষয়টি জানিয়েছে হিন্দুস্তান টাইমস। গাঁজা সৃজনশীলতা বাড়ায় মনে করে অনেক সৃজনশীল কাজে নিয়োজিত ব্যক্তি তা গ্রহণ করেন। তবে গবেষকরা বলছেন, এটি মোটেই সৃজনশীলতা বাড়ায় না। বরং গাঁজা সৃজনশীলতার বিপরীত কাজ করে। সৃজনশীল কাজ যারা করেন, তারা গাঁজা গ্রহণ করলে সৃজনশীলতা বাড়ে না বরং নষ্ট হয়ে যায়। আর এ বিষয়টি সৃজনশীল কাজ করে যারা জীবিকা নির্বাহ করেন তাদের জন্য ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। কারণ মস্তিষ্কের স্থায়ী ক্ষতি করে গাঁজা। কিন্তু কী কারণে গাঁজা সৃজনশীলতা নষ্ট করে? গবেষকরা জানিয়েছেন, সৃজনশীলতার জন্য মস্তিষ্কের ‘ব্রেইনস্টর্ম’ কার্যক্রম খুবই প্রয়োজনীয়। কিন্তু গাঁজা সেবনে এ কাজটির গতি কমে যায়। ফলে সৃজনশীলতাও কমে আসে। এ বিষয়ে গবেষণা করেছেন নেদারল্যান্ডসের লেইডেন ইউনিভার্সিটির গবেষক মিকায়েল কোয়াল। তিনি বলেন, ‘এ বিষয়টি খুব প্রচলিত বিশ্বাস যে, ড্রাগ মস্তিষ্কের সৃজনশীলতা বাড়ায়। এ গবেষণায় দেখা গেছে, বিষয়টি মোটেই সঠিক নয়।’ গবেষক কোয়াল আরও জানান, ক্রনিক ড্রাগ ব্যবহারকারীদের ভুলের হারও বেড়ে যায়। অর্থাৎ গাঁজা সেবনকারীরা কাজে বেশিমাত্রায় ভুল করে এবং ভুল নির্ণয় করার ক্ষমতাও কমে যায়। শুধু তাই নয়, গবেষকরা গাঁজার আরও কিছু ক্ষতিকর বিষয় নির্ণয় করেছেন। এর মধ্যে অন্যতম হলো নতুন বিষয় শেখার ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে গাঁজার মতো মাদক। আর এ কারণে গাঁজাসেবীরা নতুন বিষয় আয়ত্ব করতে সমস্যায় পড়ে। এছাড়া মস্তিষ্কে যে প্রক্রিয়ায় স্মৃতিশক্তি সঞ্চয় করে, তাতে বাধ সাধে গাঁজা। বেশ কিছু গবেষণায় বলা হয়, স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয় গাঁজা। গাঁজা বিষণ্নতা আনে বা বিষণ্ন মানুষ গাঁজায় আসক্ত হয় এমন বিষয়ে তথ্য পাওয়া যায়নি। তবে গবেষণায় বলা হয়, যারা বিষণ্নতায় ভোগে, গাঁজা তাদের এ সমস্যা আরো বৃদ্ধি করতে পারে। গাঁজা সেবনকারীদের প্রায়ই নানা বিষয় ভুলে যেতে দেখা যায়। আর এর কারণ অন্য কিছু নয়, গাঁজার প্রভাব। যুক্তরাষ্ট্রের নর্থওয়েস্টার্ন ইউনিভার্সিটির গবেষকরা জানিয়েছেন, গাঁজা সেবনকারীদের মস্তিষ্কে কিছুটা অস্বাভাবিকতা দেখা যায়। আর এ কারণে তাদের কিছু স্মৃতিও স্বল্পমেয়াদে হারিয়ে যায়। বেশিমাত্রায় গাঁজা সেবনে মস্তিষ্কের এ ক্ষতি স্থায়ী হয়ে যায়, যা আর ভালো হয় না। আরেকটি গবেষণায় বলা হয়েছে, গাঁজা মস্তিষ্কের ওপর স্থায়ী প্রভাব ফেলে এবং মস্তিষ্কের কোষ ধ্বংস করে। এ কারণে তা মানুষকে অস্বাভাবিক করে দেয়। দীর্ঘ ২০ বছরের গবেষণায় এ বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছেন গবেষকরা। উৎসঃ kalerkantho.com প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 10 Oct, 2015 দক্ষিণ এশিয়ায় জমজমাট কিডনি ব্যবসা! 05 Sep, 2015 অর্থলোভে অহেতুক অস্ত্রোপচার 04 Jul, 2015 ঘুষ দিন, সেবা নিন 06 Nov, 2016 পান সুপারিতে মুখের ক্যান্সার : সচেতনতায় লন্ডনের বাঙালী পাড়ায় সরকারী প্রচারাভিযান 26 Aug, 2016 বড়দের ওষুধ খাচ্ছে শিশুরা 07 Aug, 2016 রেডিয়েশনের ক্যান্সার ঝুঁকিতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ! 22 Jun, 2016 বোমা তৈরির সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেক বিস্কুট 21 Jun, 2016 অ্যাসিড ও কাপড়ের রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কোমল পানীয়! 28 Apr, 2016 সাবধান, লিচুতে নতুন ভাইরাস 22 Apr, 2016 সেবা নয়, বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে বারডেম হাসপাতাল 09 Apr, 2016 শিশুখাদ্যে প্লাস্টিক: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভবিষ্যত! 09 Apr, 2016 দেশের শতভাগ মিষ্টি, ৭৫ ভাগ সয়াবিন তেলে ভেজাল 09 Apr, 2016 ১০ টাকার ডাক্তার! 16 Feb, 2016 শেকৃবিতে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উদ্ভিদ 07 Feb, 2016 বাংলাদেশেও ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্মাতে পারে 04 Feb, 2016 শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে, কারণ ফাস্টফুড 03 Feb, 2016 প্রতিবন্ধিত্বের ৩ শতাংশই ভুল চিকিৎসায় 01 Feb, 2016 দেশে নতুন রোগের প্রকোপ 27 Jan, 2016 সাবধান! মাছ-মুরগির খাদ্যে ক্যানসারের বীজ 27 Jan, 2016 ভয়ানক এক রোগে আক্রান্ত দেশের লাখো টিন এজার, যুবক-যুবতী ! 27 Jan, 2016 মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া >>শাকসবজিও নিরাপদ নয়! 26 Jan, 2016 পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে যে ৭৫ হাসপাতাল 21 Jan, 2016 পাউরুটিতে জেলির নামে এ কী ব্যবহার হচ্ছে ! 16 Jan, 2016 বিষাক্ত কয়েলের ধোঁয়ায় কমছে প্রজনন ক্ষমতা 16 Jan, 2016 নেত্রকোনার অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু,আক্রান্ত অনেকে 28 Dec, 2015 ভিডিও >> অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত 24 Dec, 2015 অ্যান্টিবায়োটিক ‘নেশা’ ঘরে-ঘরে 20 Dec, 2015 মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দামি খাবার দেশে! 17 Dec, 2015 ‘মানবিক ভুল!’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই অজুহাত আর কতদিন? 06 Dec, 2015 ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ, খুলে দেয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:মস্তিষ্কের ওপর ফাস্টফুডের ৬টি খারাপ প্রভাব Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য মস্তিষ্কের ওপর ফাস্টফুডের ৬টি খারাপ প্রভাব 03 Oct, 2016 ফাস্টফুড কম-বেশি সকলের প্রিয়। বিশেষ করে শিশু ও ছেলে-মেয়েদের ফাস্টফুডের প্রতি রয়েছে এক ধরনের বিশেষ দুর্বলতা। কিন্তু বিশেষজ্ঞগণ গবেষণায় দেখেছেন যারা নিয়মিত ফাস্টফুড আহার করেন তাদের মাইন্ড এন্ড মুডের ওপর নানা বিরূপ প্রভাব পড়ে। ১. কানাডিয়ান গবেষকগণ বিভিন্ন গবেষণায় দেখেছেন যারা অতিমাত্রায় ফাস্টফুড আহার করেন তাদের মধ্যে চঞ্চলতা ও আচরণগত সমস্যা দেখা দেয়। ২. যারা নিয়মিত ফাস্টফুড আহার করেন তাদের আর্থিক সঞ্চয় কম হয়। যাদের বসতবাড়ি অথবা আবাসন স্থলের কাছে ফাস্টফুড রেস্টুরেন্ট আছে তাদের মানিব্যাগ প্রায় শূন্য থাকে। ফলে এদের মস্তিষ্কের ওপর খানিকটা প্রভাব পড়ে। এমন অভিমত দিয়েছেন টরেন্টো বিশ্ববিদ্যালয়ের রটম্যান স্কুল অব ম্যানেজম্যান্টের সহযোগী অধ্যাপক ড: সানফোর্ড ডেভো। ৩. যারা অতিরিক্ত ফাস্টফুড আহার করেন তারা স্বাভাবিকের চেয়ে শতকরা ৫১ ভাগ অধিক মানসিক অবসাদে ভোগেন। গবেষকগণ বলছেন, যারা বেশি পরিমাণ পিজা, বারগার ও ফ্রাইডফুড আহার করেন তাদের মানসিক চাপের ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি। ইয়েল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রিভেনশন রিসার্স সেন্টারের পরিচালক ড. ডেভিড ক্যাটজ মনে করেন যত বেশি ফাস্টফুড আহার করা হবে তার তত বেশি মানসিক অবসাদ বা ডিপ্রেশন হবে। ৪. ফাস্টফুডের আর একটি সমস্যা হচ্ছে অতিদ্রুত অধিক আহার করা হয়। এতে অধিক ক্যালরি জমা হয়। ৫. ফাস্টফুডের মাত্রাতিরিক্ত সুগার মস্তিষ্কের জন্য হিতকর নয়। যেমন: ম্যান্ডারিন চিকেন সালাদে ৩৩ গ্রাম পর্যন্ত সুগার মিশানো হয়। একইভাবে ম্যাকডোনাল্ডস এশিয়ান সালাদ ও অন্য অনেক ফাস্টফুডে অতিরিক্ত চিনি মিশানো হয়। আর এই অতিরিক্ত চিনি আহার মস্তিষ্কের জন্য হিতকর নয়। ৬. ইয়েল রুড সেন্টার ফর ফুড পলিসি এন্ড ওবেসিটি-এর তথ্য মতে বছরে শুধু ফাস্টফুডের বিজ্ঞাপন প্রচার করা হয় ৪ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারের। আর রুড সেন্টারের মার্কেটিং বিভাগের ড: জেনিফার এল হ্যারিস-এর মতে শিশু-কিশোররা দৈনিক ফাস্টফুডের এসব বিজ্ঞাপন দেখে। আর অনেক ক্ষেত্রে থাকে পুরস্কারের প্রচারণা। গবেষণায় দেখা গেছে, কম বয়সী ছেলে-মেয়েদের রিওয়ার্ড সেন্টারে ফাস্টফুডের অতিরিক্ত বিজ্ঞাপন দেখার কারণে মস্তিষ্ক অপ্রয়োজনীয়ভাবে উজ্জীবিত হয়। তাই বিশেষজ্ঞগণ অতিরিক্ত ফাস্টফুড আহার না করার পক্ষে মত দিয়েছেন। উৎসঃ টাইম নিউজ বিডি প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 10 Oct, 2015 দক্ষিণ এশিয়ায় জমজমাট কিডনি ব্যবসা! 05 Sep, 2015 অর্থলোভে অহেতুক অস্ত্রোপচার 04 Jul, 2015 ঘুষ দিন, সেবা নিন 06 Nov, 2016 পান সুপারিতে মুখের ক্যান্সার : সচেতনতায় লন্ডনের বাঙালী পাড়ায় সরকারী প্রচারাভিযান 26 Aug, 2016 বড়দের ওষুধ খাচ্ছে শিশুরা 07 Aug, 2016 রেডিয়েশনের ক্যান্সার ঝুঁকিতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ! 22 Jun, 2016 বোমা তৈরির সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেক বিস্কুট 21 Jun, 2016 অ্যাসিড ও কাপড়ের রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কোমল পানীয়! 28 Apr, 2016 সাবধান, লিচুতে নতুন ভাইরাস 22 Apr, 2016 সেবা নয়, বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে বারডেম হাসপাতাল 09 Apr, 2016 শিশুখাদ্যে প্লাস্টিক: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভবিষ্যত! 09 Apr, 2016 দেশের শতভাগ মিষ্টি, ৭৫ ভাগ সয়াবিন তেলে ভেজাল 09 Apr, 2016 ১০ টাকার ডাক্তার! 16 Feb, 2016 শেকৃবিতে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উদ্ভিদ 07 Feb, 2016 বাংলাদেশেও ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্মাতে পারে 04 Feb, 2016 শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে, কারণ ফাস্টফুড 03 Feb, 2016 প্রতিবন্ধিত্বের ৩ শতাংশই ভুল চিকিৎসায় 01 Feb, 2016 দেশে নতুন রোগের প্রকোপ 27 Jan, 2016 সাবধান! মাছ-মুরগির খাদ্যে ক্যানসারের বীজ 27 Jan, 2016 ভয়ানক এক রোগে আক্রান্ত দেশের লাখো টিন এজার, যুবক-যুবতী ! 27 Jan, 2016 মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া >>শাকসবজিও নিরাপদ নয়! 26 Jan, 2016 পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে যে ৭৫ হাসপাতাল 21 Jan, 2016 পাউরুটিতে জেলির নামে এ কী ব্যবহার হচ্ছে ! 16 Jan, 2016 বিষাক্ত কয়েলের ধোঁয়ায় কমছে প্রজনন ক্ষমতা 16 Jan, 2016 নেত্রকোনার অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু,আক্রান্ত অনেকে 28 Dec, 2015 ভিডিও >> অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত 24 Dec, 2015 অ্যান্টিবায়োটিক ‘নেশা’ ঘরে-ঘরে 20 Dec, 2015 মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দামি খাবার দেশে! 17 Dec, 2015 ‘মানবিক ভুল!’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই অজুহাত আর কতদিন? 06 Dec, 2015 ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ, খুলে দেয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:ঈদের বিকালে হালকা বৃষ্টির আভাস Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ ঈদের বিকালে হালকা বৃষ্টির আভাস 11 Sep, 2016 আবহাওয়াবিদদের ধারণা ঠিক থাকলে এবার ‘ভালো’ আবহাওয়ার মধ‌্যেই কোরবানির ঈদ উদযাপন করতে পারবে বাংলাদেশের মানুষ; বিকালের পর দুয়েক পশলা বৃষ্টিরও দেখা মিলতে পারে। নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানিতে মিলবে ঈমাম-কসাই বাংলাদেশের মুসলমানরা ঈদ উদযাপন করবেন আগামী মঙ্গলবার, বাংলা পঞ্জিকা অনুযায়ী সেদিন ভাদ্রের ২৯ তারিখ। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, সেদিন সকাল থেকে মোটামুটি রোদেলা আবহাওয়া বিরাজ করতে পারে। পরিস্থিতি সামান‌্য বদলাতে পারে বিকালের ভাগে। অধিদপ্তরের জ্যেষ্ঠ আবহাওয়াবিদ রুহুল কুদ্দুস বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ঢাকায় ঈদের দিন বেলা ১২টা পর্যন্ত ২০% সম্ভাবনা রয়েছে হালকা বৃষ্টির; আবার নাও হতে পারে। তবে বিকালে হালকা বৃষ্টি হতে পারে, সম্ভাবনা ৮০%।” ঢাকার বাইরে সিলেট, রংপুর ও ময়মনসিংহ বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় সেদিন বৃষ্টি হতে পারে বলে জানান তিনি। রুহুল কুদ্দুস বলেন, গত কয়েক দিনে বৃষ্টি হয়েছে অনেক এলাকায়। এখন আবহাওয়া একটু ভালোর দিকে। ঈদের দিন ঢাকা, খুলনা, বরিশাল ও রাজশাহী বিভাগের দুয়েক জায়গায় বৃষ্টি হতে পারে। “তাপমাত্রাও দুয়েক ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে; হালকা বৃষ্টি সাময়িক সময়ের জন্য হলেও রোদেলা আবহাওয়াই থাকবে বেশি।” সরকার নির্ধারিত স্থানে পশু কোরবানি করতে জনসাধারণকে উৎসাহ যোগালেও শহর এলাকায় যত্রতত্র জবাই ও মাংস কাটা চলে বলে ঈদের দিন সেই বর্জ‌্য অপসারণ সিটি করপোরেশনের জন‌্য একটি বড় ঝক্কি হয়ে দাঁড়ায়। ফলে ঈদের দিনে শেষ বেলায় বৃষ্টি হলে তা অনেকটা আকাঙ্ক্ষিতই থাকে। সোমবারের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, রংপুর, ময়মনসিংহ, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের অনেক জায়গায় এবং ঢাকা, রাজশাহী, খুলনা ও বরিশাল বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় অস্থায়ী দমকা হাওয়াসহ হাল্কা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারি বর্ষণ হতে পারে। সোমবারের পর থেকে বৃষ্টি কমে আবহাওয়ার সামান্য পরিবর্তন শুরু হতে পারে। বুধবারও এমন আবহাওয়া থাকতে পারে বলে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা জানান। উৎসঃ বিডিনিউজ প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 23 Sep, 2016 বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 24 Aug, 2016 বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প, আতঙ্ক 20 May, 2016 কতটা শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু? 18 May, 2016 ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ >> দেশ পরিণত হবে মরুভূমিতে 14 May, 2016 বজ্রাঘাত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা 02 May, 2016 কালও বৃষ্টি হতে পারে 27 Apr, 2016 উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ, হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদী 17 Apr, 2016 বিশ্বজুড়ে ঘনঘন ভূমিকম্প, বড় কম্পনের হুঁশিয়ারি শীর্ষ বিজ্ঞানীর 17 Apr, 2016 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধেয়ে আসছে আকস্মিক বন্যা 16 Apr, 2016 চারটি তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা 22 Mar, 2016 পানি সংকটের ভয়াবহতা বাড়ছে 17 Mar, 2016 যমুনায় হাঁটুজল 23 Feb, 2016 তলিয়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-চট্টগ্রাম! 05 Feb, 2016 তিস্তার সব পানিই নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, এদেশে এখন শুধু বালুচর 29 Jan, 2016 পঞ্চগড়ের পথে পথে গোলাপি-বেগুনি রডোডেন্ড্রনের বাহার 26 Jan, 2016 যানজটে শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভোগে ৭৩% মানুষ 05 Jan, 2016 ২৬ মের মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে? 03 Dec, 2015 ফের সুন্দরবন বিপর্যয়ের শঙ্কা : ৭৪৫ টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে চরে আটকা এমভি শোভন 10 Nov, 2015 কৃষির হুমকি আফ্রিকান শামুক 13 Sep, 2015 ৮০০ বাঁধ তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে! 08 Sep, 2015 মানুষকে ছায়া দেওয়াই যাঁর নেশা 02 Sep, 2015 শুক্রবার থেকে আরো বৃষ্টি! 24 Aug, 2015 ভিডিও >> মরুকরণের দিকে যাচ্ছে ঢাকা! 22 Aug, 2015 এক্সক্লুসিভ ভিডিও >> বিমানের উপর বজ্রপাত পড়লো যেভাবে 14 Aug, 2015 সালফারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাতাস 31 Jul, 2015 ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’: নামকরণের নেপথ্যে 30 Jul, 2015 ঝড়ের তীব্র বেগে উড়ে গেলো মানুষ! 30 Jul, 2015 ভিডিও >> টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ 29 Jul, 2015 সাগরে গভীর নিম্নচাপ>>৩-৪ ফ‍ুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা;আতঙ্কে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ 23 Jul, 2015 ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প >> ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে বাংলাদেশে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:এই ৫টি ডাক্তারি পরীক্ষা করতে একদম ভুলে যাবেন না Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য এই ৫টি ডাক্তারি পরীক্ষা করতে একদম ভুলে যাবেন না 05 Oct, 2016 আপনি কি নিয়মিত ডাক্তার দেখান? নাকি শরীরের ছোটখাট সমস্যায় নিজেই ডাক্তারি করেন? অনেক সময়ই আমরা শরীরের বিভিন্ন সমস্যা অবহেলা করে থাকি। আর পরে তার ফল ভুগতে হয় আমাদের। শরীর সুস্থ রাখতে আমাদের নিয়ম করে ৫টা পরীক্ষা অবশ্যই করানো উচিত। ১) ত্বকের পরীক্ষা- একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ আপনার সারা শরীরের ত্বক পরীক্ষা করে থাকে। স্কাল্প থেকে পায়ের আঙুল পর্যন্ত। ত্বকের যে কোনও সমস্যার সমাধান তিনিই দিতে পারবেন। ত্বক ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে কোনও রকম সমস্যা অবহেলা করবেন না। সামান্য চুলকানি, খসখস, চামড়া উঠে যাওয়া থেকে শুরু করে গুটি ওঠা, রাশ ডাক্তারের পরামর্শ নিন। ২) যৌনাঙ্গে সংক্রমণ- যৌনাঙ্গে সংক্রমণ একজন পুরুষের থেকে মহিলার বেশি হয়। তাই কোনও রকম সমস্যা- চুলকানি, UTI, স্রাব...গাইনোকোলজিস্টের সঙ্গে পরামর্শ করা অবশ্যই দরকার। ৩) STD পরীক্ষা- যৌন সংক্রমণ ঘটিত রোগগুলি এড়ানোর জন্য রক্ত, মূত্র ও জেনিটাল সোয়াব টেস্ট করানো বাধ্যতামূলক। যাতে গনোরিয়া, ক্ল্যামিডিয়া ও HIV-র মত সংক্রমণ না ছড়িয়ে পড়ে। ৪) ম্যামোগ্রাম- সাম্প্রতিককালে মহিলাদের মধ্যে ভীষণভাবে বেড়ে গেছে ব্রেস্ট ক্যান্সার। আর তাই নিয়মিত ভিত্তিতে ম্যামোগ্রাম করানো রীতিমত জরুরি। ডাক্তাররা বলেন, ৪০ বছর হলেই প্রত্যেক মহিলার নিয়ম করে ম্যামোগ্রাম করানো উচিত। আর পরিবারে যদি আগে কারুর ব্রেস্ট ক্যান্সার হয়ে থাকে, তাহলে আরও আগে থেকেই চেকআপ করানো দরকার। ৫) কোলেস্টেরল- নিয়মিত কোলেস্টেরল পরীক্ষা করানো ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ। রক্তে দুই ধরনের কোলেস্টেরল থাকে। LDL বা ব্যাড কোলেস্টেরল এবং HDL বা গুড কোলেস্টেরল। এ ছাড়াও থাকে ট্রাইগ্লিসারাইড নামে একধরনের ফ্যাট। লিপিড প্রোফাইল টেস্টের মাধ্যমে রক্তে কোলেস্টেরলের ভারসাম্য ঠিক আছে কি না, তা বোঝা যায়। রক্তে কোলেস্টেরলের পরিমাণ বিশেষ করে LDL ও ট্রাইগ্লিসারাইডের পরিমাণ বেড়ে গেলে হৃদরোগ ও স্ট্রোকের সম্ভাবনা বেড়ে যায়। সূত্র-জি নিউজ প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 10 Oct, 2015 দক্ষিণ এশিয়ায় জমজমাট কিডনি ব্যবসা! 05 Sep, 2015 অর্থলোভে অহেতুক অস্ত্রোপচার 04 Jul, 2015 ঘুষ দিন, সেবা নিন 06 Nov, 2016 পান সুপারিতে মুখের ক্যান্সার : সচেতনতায় লন্ডনের বাঙালী পাড়ায় সরকারী প্রচারাভিযান 26 Aug, 2016 বড়দের ওষুধ খাচ্ছে শিশুরা 07 Aug, 2016 রেডিয়েশনের ক্যান্সার ঝুঁকিতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ! 22 Jun, 2016 বোমা তৈরির সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেক বিস্কুট 21 Jun, 2016 অ্যাসিড ও কাপড়ের রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কোমল পানীয়! 28 Apr, 2016 সাবধান, লিচুতে নতুন ভাইরাস 22 Apr, 2016 সেবা নয়, বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে বারডেম হাসপাতাল 09 Apr, 2016 শিশুখাদ্যে প্লাস্টিক: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভবিষ্যত! 09 Apr, 2016 দেশের শতভাগ মিষ্টি, ৭৫ ভাগ সয়াবিন তেলে ভেজাল 09 Apr, 2016 ১০ টাকার ডাক্তার! 16 Feb, 2016 শেকৃবিতে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উদ্ভিদ 07 Feb, 2016 বাংলাদেশেও ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্মাতে পারে 04 Feb, 2016 শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে, কারণ ফাস্টফুড 03 Feb, 2016 প্রতিবন্ধিত্বের ৩ শতাংশই ভুল চিকিৎসায় 01 Feb, 2016 দেশে নতুন রোগের প্রকোপ 27 Jan, 2016 সাবধান! মাছ-মুরগির খাদ্যে ক্যানসারের বীজ 27 Jan, 2016 ভয়ানক এক রোগে আক্রান্ত দেশের লাখো টিন এজার, যুবক-যুবতী ! 27 Jan, 2016 মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া >>শাকসবজিও নিরাপদ নয়! 26 Jan, 2016 পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে যে ৭৫ হাসপাতাল 21 Jan, 2016 পাউরুটিতে জেলির নামে এ কী ব্যবহার হচ্ছে ! 16 Jan, 2016 বিষাক্ত কয়েলের ধোঁয়ায় কমছে প্রজনন ক্ষমতা 16 Jan, 2016 নেত্রকোনার অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু,আক্রান্ত অনেকে 28 Dec, 2015 ভিডিও >> অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত 24 Dec, 2015 অ্যান্টিবায়োটিক ‘নেশা’ ঘরে-ঘরে 20 Dec, 2015 মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দামি খাবার দেশে! 17 Dec, 2015 ‘মানবিক ভুল!’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই অজুহাত আর কতদিন? 06 Dec, 2015 ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ, খুলে দেয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:চলতি বছরে বজ্রপাতে ১৭৭ জন নিহত Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ চলতি বছরে বজ্রপাতে ১৭৭ জন নিহত 27 Sep, 2016 চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতে ১৭৭ জন নিহত হয়েছে বলে জানিয়েছেন দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া। মায়া বলেন, এ পর্যন্ত ১ লাখ ৭৮ হাজার ৩৫টি সোলার প্যানেল ও বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। মঙ্গলবার জাতীয় সংসদে সরকারি দলের সদস্য মো. ইসরাফিল আলমের এক প্রশ্নের জবাবে এ কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, কাবিখা কর্মসূচির আওতায় ৯৯ হাজার ৫শ’ মেঃ টন খাদ্যশস্য এবং ৭৯ কোটি ৮২ লাখ ৮৩ হাজার ৩৭৩ টাকা ব্যয়ে ১৩ হাজার ৭৩৫টি সোলার প্যানেল ও বায়োগ্যাস প্লাটগুলো স্থাপন করা হয়েছে। তিনি বলেন, টিআর কর্মসূচির আওতায় ৬৯ হাজার ৫৩১ মেঃ টন খাদ্যশস্য এবং ২৫৬ কোটি ১৬ লাখ ৫৪ হাজার ৯৩ টাকা ব্যয়ে ৯৪ হাজার ১শ’টি সোলার প্যানেল ও বায়োগ্যাস প্লান্ট স্থাপন করা হয়েছে। জাতীয় পার্টির সদস্য মো. নুরুল ইসলাম ওমরের অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রী বলেন, গত অর্থবছরে কাবিখা সাধারণ ১ লাখ ৯৩ হাজার ৫৪৩ মেঃ টন খাদ্যশস্য ও ১৫৯ কোটি ১৮ লাখ ৯২ হাজার ৪২৯ টাকা এবং বিশেষ খাতে ৭ হাজার ৫২৭ মেঃ টন খাদ্যশস্য ও ২৯৩ কোটি ৭৬ লাখ ৪১ হাজার ১১০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। তিনি বলেন, টিআর সাধারণ ১ লাখ ৮১ হাজার ৪শ’ মেঃ টন খাদ্য শস্য এবং ৪৫২ কোটি ২৬ লাখ ৮১ হাজার ৪৫০ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে এবং বিশেষ ১৮ হাজার ৪৯৩ মেঃ টন খাদ্যশস্য এবং ১২১ কোটি ২২ লাখ ৪৬ হাজার ৯৫৫ টাকা বরাদ্দ প্রদান করা হয়েছে। মায়া বলেন, চলতি বছরে বজ্রপাতে ১৭৭ জন নিহত হয়েছে সরকারি দলের সদস্য এম আবদুল লতিফের এক প্রশ্নের জবাবে মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বলেছেন, চলতি বছরে জানুয়ারি থেকে ২০ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বজ্রপাতে ১৭৭ জন নিহত হয়েছে। তিনি আরো বলেন, বজ্রপাতে নিহতদের জনপ্রতি গড়ে ২০ হাজার টাকা সহায়তা প্রদান করা হয়েছে। এম আবদুল লতিফের অপর এক প্রশ্নের জবাবে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা মন্ত্রী বলেন, চলতি বছরের ২২ মে রোয়ানুর আঘাতে ৭টি জেলার ২৭ জন লোক প্রাণ হারায়। তিনি বলেন, রোয়ানুর আঘাতে ১১ জেলার ১১শ’ ২৬ কোটি ৮০ লাখ ৩৫ হাজার ৪৫৪ টাকার ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। মন্ত্রী বলেন, দুর্গত উপকূলীয় এলাকার সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের কাছে পর্যাপ্ত পরিমাণ ত্রাণসামগ্রী মজুদ রয়েছে, মজুদকৃত ত্রাণসামগ্রী থেকে ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হয়েছে। উৎসঃ rtnn প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 23 Sep, 2016 বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 24 Aug, 2016 বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প, আতঙ্ক 20 May, 2016 কতটা শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু? 18 May, 2016 ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ >> দেশ পরিণত হবে মরুভূমিতে 14 May, 2016 বজ্রাঘাত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা 02 May, 2016 কালও বৃষ্টি হতে পারে 27 Apr, 2016 উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ, হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদী 17 Apr, 2016 বিশ্বজুড়ে ঘনঘন ভূমিকম্প, বড় কম্পনের হুঁশিয়ারি শীর্ষ বিজ্ঞানীর 17 Apr, 2016 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধেয়ে আসছে আকস্মিক বন্যা 16 Apr, 2016 চারটি তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা 22 Mar, 2016 পানি সংকটের ভয়াবহতা বাড়ছে 17 Mar, 2016 যমুনায় হাঁটুজল 23 Feb, 2016 তলিয়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-চট্টগ্রাম! 05 Feb, 2016 তিস্তার সব পানিই নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, এদেশে এখন শুধু বালুচর 29 Jan, 2016 পঞ্চগড়ের পথে পথে গোলাপি-বেগুনি রডোডেন্ড্রনের বাহার 26 Jan, 2016 যানজটে শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভোগে ৭৩% মানুষ 05 Jan, 2016 ২৬ মের মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে? 03 Dec, 2015 ফের সুন্দরবন বিপর্যয়ের শঙ্কা : ৭৪৫ টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে চরে আটকা এমভি শোভন 10 Nov, 2015 কৃষির হুমকি আফ্রিকান শামুক 13 Sep, 2015 ৮০০ বাঁধ তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে! 08 Sep, 2015 মানুষকে ছায়া দেওয়াই যাঁর নেশা 02 Sep, 2015 শুক্রবার থেকে আরো বৃষ্টি! 24 Aug, 2015 ভিডিও >> মরুকরণের দিকে যাচ্ছে ঢাকা! 22 Aug, 2015 এক্সক্লুসিভ ভিডিও >> বিমানের উপর বজ্রপাত পড়লো যেভাবে 14 Aug, 2015 সালফারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাতাস 31 Jul, 2015 ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’: নামকরণের নেপথ্যে 30 Jul, 2015 ঝড়ের তীব্র বেগে উড়ে গেলো মানুষ! 30 Jul, 2015 ভিডিও >> টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ 29 Jul, 2015 সাগরে গভীর নিম্নচাপ>>৩-৪ ফ‍ুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা;আতঙ্কে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ 23 Jul, 2015 ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প >> ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে বাংলাদেশে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:বেশিরভাগ মানুষই জীবদ্দশায় বৈশ্বিক উষ্ণতার বিপদ প্রত্যক্ষ করবেন Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ বেশিরভাগ মানুষই জীবদ্দশায় বৈশ্বিক উষ্ণতার বিপদ প্রত্যক্ষ করবেন 30 Sep, 2016 ২০৫০ সালের আগেই বিশ্বের তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। এতে করে জলবায়ু পরিবর্তন বিপদজনক হয়ে উঠবে। জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে শীর্ষস্থানীয় একদল বিশেষজ্ঞ বলেছেন এ কথা। ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট ক্লাইমেট চেঞ্জ’ শীর্ষক এক প্রবন্ধে উঠে এসেছে এ বিষয়ে তাদের উদ্বেগের কথা। তারা বলেছেন, অনেকেই হয়তো বৈশ্বিক উষ্ণায়নকে ‘বিমূর্ত, দূরবর্তী ও বিতর্কিত’ মনে করে থাকেন। কিন্তু প্রবন্ধের অন্যতম লেখক ও ইন্টারগভর্নমেন্টাল প্যানেল অন ক্লাইমেট চেঞ্জের সাবেক প্রধান অধ্যাপক স্যার রবার্ট ওয়াটসন বলছেন, অনুমানের চাইতে ‘অনেক বেশি দ্রুতগতিতে’ বিশ্বের তাপমাত্রা বাড়ছে। তাদের বিশ্লেষণ সঠিক হলে, বর্তমানে জীবিত মানুষের বেশিরভাগই তাদের জীবদ্দশায় বিপদজনকভাবে উচ্চতাপমাত্রার একটি গ্রহে বসবাসের অভিজ্ঞতা লাভ করবেন। এ খবর দিয়েছে লন্ডনের অনলাইন দ্য ইন্ডিপেন্ডেন্ট। খবরে বলা হয়, গত বছরের প্যারিস জলবায়ু সম্মেলনে বিশ্ব নেতারা প্রাক-শিল্প যুগের চেয়ে বৈশ্বিক উষ্ণতাকে ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস পর্যন্ত বেশি রাখতে সম্মত হন। ওই সময়ের তাপমাত্রার তুলনায় এখন তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি হয়ে পড়লে তা নিরাপদ হবে না, এমন আশঙ্কা ছিল। কিন্তু গত বছরেই উষ্ণতা ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশিতে গিয়ে ঠেকে। এর আগের তিন বছরেই এই তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায় ০.১৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। খরা, বন্যা, বনে আগুন এবং ঝড়Ñ এর সবই বিশ্বের তাপমাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বাড়বে। এতে ঝুঁকিতে পড়বে ফসল এবং অনেক প্রজাতিই বিলুপ্ত হয়ে পড়বে। বিশেষজ্ঞদের প্রতিবেদনে সতর্ক করে দেয়া হয়েছে, ১.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধিতে বিশ্বকে স্থির রাখার ঘোষণা এরই মধ্যে প্রায় নিশ্চিতভাবেই পূরণ হওয়ার লক্ষ্য পেরিয়ে গিয়েছে। এমনকি যদি প্যারিসের সম্মেলনে প্রতিশ্রুত সব দেশই কার্বন নিঃসরণ কমিয়ে দেয়, ২০৩০ সাল নাগাদ তাপমাত্রা ১.৫ ডিগ্রি বেশিতে গিয়ে ঠেকবে এবং ২০৫০ সাল নাগাদ পৌঁছে যাবে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশিতে। রসায়নবিদ অধ্যাপক ওয়াটসন নাসা, বিশ্বব্যাংক ও মার্কিন প্রেসিডেন্টের কার্যালয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে নরউইচে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক গবেষণায় নিয়োজিত এই অধ্যাপক বলেন, ‘জলবায়ু পরিবর্তন এখই ঘটছে এবং ধারণার তুলনায় অনেক বেশি গতিতে তা ঘটছে। জলবায়ু পরিবর্তন ইস্যুতে প্যারিস সম্মেলন সঠিক পথে একটি পদক্ষেপ। কিন্তু প্রয়োজন এর চেয়ে দ্বিগুণ বা তিন গুণ বেশি প্রচেষ্টা। কার্বন নিঃসরণ করা প্রধান দেশগুলোর পক্ষ থেকে বাড়তি প্রচেষ্টা গ্রহণ না করা হলে ২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের লক্ষ্যও আরও আগেই অর্জিত হয়ে যেতে পারে।’ ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট ক্লাইমেট চেঞ্জ’ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এরই মধ্যে নিঃসৃত হওয়া গ্রিন হাউজ গ্যাসের কারণে আরও বাড়তি ০.৪ থেকে ০.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বাড়তে পারে। এতে আরও বলা হয়েছে, প্যারিস ঘোষণার পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের জন্য সম্মেলনের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী ধনী দেশগুলোকে দরিদ্র দেশগুলোর জন্য বছরে ১০ হাজার কোটি ডলার দিতে হবে। অধ্যাপক ওয়াটসন বলেন, ‘প্রতিশ্রুতির প্রায় ৮০ ভাগই উন্নত দেশগুলোর পক্ষ থেকে দেয়া আর্থিক ও কারিগরি সমর্থনের ওপর নির্ভরশীল। এসব শর্ত না মানা হতে পারে। যার অর্থ হলোÑ এই প্রতিশ্রুতিগুলোও পূরণ না হতে পারে।’ এর মধ্যেই যেমন যুক্তরাজ্য ইঙ্গিত দিয়েছে যে তাদের অংশটি আসবে বিদেশি সহায়তা বাজেট থেকে। যার অর্থ হলো দরিদ্র দেশগুলো এখন যা পাচ্ছে তার চেয়ে বেশি পাবে না। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা বৃদ্ধি হবে না, এমন সুযোগ নেই বললেই চলে। এতে বলা হয়েছে, ‘২ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা কখন বৃদ্ধি পাবে, এটা উদ্বেগের বিষয় নয়। উদ্বেগের বিষয় হলো এই তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে জলবায়ু পরিবর্তনে কী প্রভাব পড়বে সেটা। ১৯৯০ সাল থেকে জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়াগত ঘটনা দ্বিগুণ হয়েছে। আগামী কয়েক দশকে বিশ্বের গড় তাপমাত্রা ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বেশি বাড়লে এসব ঘটনা আরও দ্বিগুণ হয়ে যাবে। এসব ঘটনা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে পানির উৎস, খাদ্যের উৎপাদন, মানব স্বাস্থ্য, সেবা, গ্রাম ও নগরের অবকাঠামোসহ আরও অন্যান্য বিষয়ের ওপর এগুলোর প্রভাব আরও বাড়বে এবং তীব্র হবে। জলবায়ু পরিবর্তনের কিছু প্রভাব হয়তো উপকারী হতে পারে, কিন্তু বেশিরভাগই তা হবে না। তা সব খানের জীবন ও জীবিকাতেই নেতিবাচক প্রভাব রাখবে।’ ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস গড় তাপমাত্রা বৃদ্ধি ঠেকানোর সময়কে পিছিয়ে দেয়ার মতো সময় এখনও রয়েছে বলে উল্লেখ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এর জন্য জ্বালানি উৎপাদন ও এর ব্যবহারে আমূল পরিবর্তন আনার আহ্বান জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। তারা ইলেকট্রিক গাড়ি ব্যবহারের দিকে যাওয়ার কথা বলেছেন। তারা জীবাশ্ম জ্বালানির পাওয়ার স্টেশন ও শিল্প কারখানা থেকে কার্বন গ্রহণ ও সংরক্ষণের দিকে যাওয়ার কথাও বলেছেন। বন ধ্বংস রোধ করার পাশাপাশি কার্বন শোষণ করে এমন গাছ লাগানোর পরামর্শ দিয়েছেন তারা। তবে জলবায়ু পরিবর্তনের ফলে যেসব ‘অনিবার্য’ ক্ষতিকর প্রভাব এরই মধ্যে আমাদের সামনে রয়েছে, সেগুলো মোকাবিলা করার জন্য মানুষকে পদক্ষেপ নিতে হবে বলেও জানিয়েছেন গবেষকরা। প্রতিবেদনের আরেক লেখক হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সমুদ্রবিদ্যার অধ্যাপক জেমন ম্যাককাথি বলেন, আঞ্চলিক পরিস্থিতি বিবেচনায় অভিযোজনমূলক সঠিক পদক্ষেপ নেয়াটা জরুরি। আরেক গবেষক মার্ক লিনাস এই প্রতিবেদন ‘দ্য ট্রুথ অ্যাবাউট ক্লাইমেট চেঞ্জ’ প্রতিবেদনে উঠে আসা বিষয়গুলোকে ‘চূড়ান্ত উদ্বেগকর’ বলে অভিহিত করেছেন। তিনি বলেন, ২ ডিগ্রি তাপমাত্রা বেড়ে গেলে আমরা এই শতকের শেষ নাগাদ ৩ ডিগ্রি তাপমাত্রা বৃদ্ধির পথে থাকব। এতে হিমবাহ গলতে থাকবে পূর্ণগতিতে। আমাদের শষ্য উৎপাদনের স্থান পরিণত হবে মরুভূমিতে। বিশ্ব পড়বে খাদ্য সংকটের তীব্র হুমকিতে। তিনি বলেন, ‘আমরা সম্ভবত গ্রীষ্মম-লীয় প্রবাল প্রাচীর হারাব। এর সঙ্গে উদ্ভিদ ও প্রাণীর বড় একটি অংশই বিলুপ্তির পথে থাকবে। আর আমরা আমাদের সন্তান ও নাতি-নাতনীদের নিন্দা করব সমুদ্রের উচ্চতা কয়েক মিটার বেড়ে যাওয়ার কারণে। তাতে বেশিরভাগ উপকূলীয় শহরটি শেষ পর্যন্ত খালি হয়ে যাবে।’ উৎসঃ মানবজমিন প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 23 Sep, 2016 বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 24 Aug, 2016 বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প, আতঙ্ক 20 May, 2016 কতটা শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু? 18 May, 2016 ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ >> দেশ পরিণত হবে মরুভূমিতে 14 May, 2016 বজ্রাঘাত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা 02 May, 2016 কালও বৃষ্টি হতে পারে 27 Apr, 2016 উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ, হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদী 17 Apr, 2016 বিশ্বজুড়ে ঘনঘন ভূমিকম্প, বড় কম্পনের হুঁশিয়ারি শীর্ষ বিজ্ঞানীর 17 Apr, 2016 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধেয়ে আসছে আকস্মিক বন্যা 16 Apr, 2016 চারটি তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা 22 Mar, 2016 পানি সংকটের ভয়াবহতা বাড়ছে 17 Mar, 2016 যমুনায় হাঁটুজল 23 Feb, 2016 তলিয়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-চট্টগ্রাম! 05 Feb, 2016 তিস্তার সব পানিই নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, এদেশে এখন শুধু বালুচর 29 Jan, 2016 পঞ্চগড়ের পথে পথে গোলাপি-বেগুনি রডোডেন্ড্রনের বাহার 26 Jan, 2016 যানজটে শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভোগে ৭৩% মানুষ 05 Jan, 2016 ২৬ মের মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে? 03 Dec, 2015 ফের সুন্দরবন বিপর্যয়ের শঙ্কা : ৭৪৫ টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে চরে আটকা এমভি শোভন 10 Nov, 2015 কৃষির হুমকি আফ্রিকান শামুক 13 Sep, 2015 ৮০০ বাঁধ তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে! 08 Sep, 2015 মানুষকে ছায়া দেওয়াই যাঁর নেশা 02 Sep, 2015 শুক্রবার থেকে আরো বৃষ্টি! 24 Aug, 2015 ভিডিও >> মরুকরণের দিকে যাচ্ছে ঢাকা! 22 Aug, 2015 এক্সক্লুসিভ ভিডিও >> বিমানের উপর বজ্রপাত পড়লো যেভাবে 14 Aug, 2015 সালফারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাতাস 31 Jul, 2015 ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’: নামকরণের নেপথ্যে 30 Jul, 2015 ঝড়ের তীব্র বেগে উড়ে গেলো মানুষ! 30 Jul, 2015 ভিডিও >> টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ 29 Jul, 2015 সাগরে গভীর নিম্নচাপ>>৩-৪ ফ‍ুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা;আতঙ্কে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ 23 Jul, 2015 ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প >> ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে বাংলাদেশে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:মা ইলিশ রক্ষায় নেই কোনো প্রচারণা Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ মা ইলিশ রক্ষায় নেই কোনো প্রচারণা 11 Oct, 2016 প্রজনন বৃদ্ধি নিরাপদ করতে ইলিশের জন্য নতুন একটি অভয়াশ্রম করা হচ্ছে। মেঘনা নদীঘেরা বরিশাল, মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলার ৭৫ বর্গকিলোমিটার এলাকাজুড়ে এ অভয়াশ্রমটি হবে দেশের ইলিশের ষষ্ঠ অভয়াশ্রম। অথচ এসব এলাকায় ইলিশ সম্পদ সংরক্ষণকার্যক্রম বাস্তবায়নে কোনো প্রচারণা নেই। ফলে সরকার ঘোষিত ১২ অক্টোবর থেকে আগামী ২২ দিন মা ইলিশ রক্ষার অভিযান ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। সূত্র মতে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা মাসিক সমন্বয় সভায় প্রজনন মওসুমে মা ইলিশ রক্ষায় উলানিয়া, ভাসানচর ও ফজরগঞ্জের জেলেদের নিয়ে জনসচেতনতামূলক উদ্বুদ্ধকরণ সভা, পোস্টার, ব্যানার, লিফলেট বিতরণ, প্রচারণার জন্য মাইকিং, মৎস্যজীবী, মৎস্য ব্যবসায়ী, মাছ ধরার ট্রলার, নৌকার মালিক, আড়তদার ও বরফকলের মালিকদের নিয়ে পৃথকভাবে সভা করার জন্য উপজেলা মৎস্য অধিদফতরকে অনুরোধ করা হলেও আজ পর্যন্ত তার কোনোটিই করা হয়নি। সবকিছুই কাগজে কলমে সীমাবদ্ধ রয়েছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে নির্ভরযোগ্য একাধিক সূত্রে জানা গেছে, প্রতিবছর ইলিশ প্রজনন মওসুমে মাছ ধরার ট্রলার, নৌকা, জেলে, আড়তদার, ব্যবসায়ী ও বরফকল থেকে উপজেলা মৎস্য অধিদফতরের কর্মকর্তাদের মোটা অঙ্কের টাকা দেয়া হয়। অভিযোগ রয়েছে, এ বছরও পুরনো রেওয়াজকে বহাল রাখতে এখনো স্থানীয় মৎস্য অধিদফতর কোনো সভা সেমিনারের আয়োজন করেনি। ফলে ঘোষণার অপেক্ষায় থাকা ইলিশের ষষ্ঠ অভয়াশ্রম মেঘনাঘেরা মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় মা ইলিশ রক্ষার অভিযান ব্যর্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এ ব্যাপারে উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা অপু সাহার সাথে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি প্রচার না করার ব্যাপারে কোনো কথা বলতে রাজি হননি। তবে কোস্টগার্ড বরিশালের ইপিআরএ মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, মেঘনা নদীর মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলায় এবার কোস্টগার্ডের পক্ষ থেকে সর্বাত্মক সতর্ক অবস্থানে থাকার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। মা ইলিশ রক্ষায় সরকার ঘোষিত ২২ দিনে ওই এলাকায় কোনো জেলেই নদীতে মাছ ধরতে নামতে পারবে না। উৎসঃ নয়াদিগন্ত প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 23 Sep, 2016 বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 24 Aug, 2016 বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প, আতঙ্ক 20 May, 2016 কতটা শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু? 18 May, 2016 ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ >> দেশ পরিণত হবে মরুভূমিতে 14 May, 2016 বজ্রাঘাত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা 02 May, 2016 কালও বৃষ্টি হতে পারে 27 Apr, 2016 উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ, হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদী 17 Apr, 2016 বিশ্বজুড়ে ঘনঘন ভূমিকম্প, বড় কম্পনের হুঁশিয়ারি শীর্ষ বিজ্ঞানীর 17 Apr, 2016 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধেয়ে আসছে আকস্মিক বন্যা 16 Apr, 2016 চারটি তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা 22 Mar, 2016 পানি সংকটের ভয়াবহতা বাড়ছে 17 Mar, 2016 যমুনায় হাঁটুজল 23 Feb, 2016 তলিয়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-চট্টগ্রাম! 05 Feb, 2016 তিস্তার সব পানিই নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, এদেশে এখন শুধু বালুচর 29 Jan, 2016 পঞ্চগড়ের পথে পথে গোলাপি-বেগুনি রডোডেন্ড্রনের বাহার 26 Jan, 2016 যানজটে শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভোগে ৭৩% মানুষ 05 Jan, 2016 ২৬ মের মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে? 03 Dec, 2015 ফের সুন্দরবন বিপর্যয়ের শঙ্কা : ৭৪৫ টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে চরে আটকা এমভি শোভন 10 Nov, 2015 কৃষির হুমকি আফ্রিকান শামুক 13 Sep, 2015 ৮০০ বাঁধ তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে! 08 Sep, 2015 মানুষকে ছায়া দেওয়াই যাঁর নেশা 02 Sep, 2015 শুক্রবার থেকে আরো বৃষ্টি! 24 Aug, 2015 ভিডিও >> মরুকরণের দিকে যাচ্ছে ঢাকা! 22 Aug, 2015 এক্সক্লুসিভ ভিডিও >> বিমানের উপর বজ্রপাত পড়লো যেভাবে 14 Aug, 2015 সালফারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাতাস 31 Jul, 2015 ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’: নামকরণের নেপথ্যে 30 Jul, 2015 ঝড়ের তীব্র বেগে উড়ে গেলো মানুষ! 30 Jul, 2015 ভিডিও >> টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ 29 Jul, 2015 সাগরে গভীর নিম্নচাপ>>৩-৪ ফ‍ুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা;আতঙ্কে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ 23 Jul, 2015 ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প >> ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে বাংলাদেশে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে চাইলে বাচ্চাকে ব্রেস্টফিডিং করান Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচতে চাইলে বাচ্চাকে ব্রেস্টফিডিং করান 09 Oct, 2016 শিশুর স্বাস্থ্য বা পুষ্টির কথা ভেবে আজকাল ডাক্তাররা বেশি করে ব্রেস্টফিডিং করানোর পরমার্শ দেন। সব মায়েরাই যে ডাক্তারের কথা শোনেন, এমনটা নয়। নানা ভ্রান্ত ধারণায়, নিজের ফিগার ধরে রাখতে অনেক মাই বাচ্চাকে স্তন্যপান থেকে বিরত থাকেন। কিন্তু ঘটনা হলো, মায়ের নিজের বেঁচে থাকার জন্যই বাচ্চাকে স্তন্যপান করানো জরুরি। স্তন্যপানে যতটা বাচ্চার উপকার হয়, তার চেয়ে অনেক বেশি উপকার হয় মায়ের। এমনটাই বলছে রিসার্চ। গবেষকদের কথায়, স্তন্যদান আসলে মায়েরই 'লাইফসেভার'। অনলাইনে গবেষণা রিপোর্টটি প্রকাশ করেছে 'মেটারন্যাল অ্যান্ড চাইল্ড নিউট্রিশন'। সেখানে স্পষ্ট করে উল্লেখ রয়েছে, শিশুর স্বাস্থ্যের সঙ্গে যদি তুলনা করা যায় তা হলে বলতে হয়, শিশুর থেকে মায়ের নিজের স্বাস্থ্যের কারণে ব্রেস্টফিডিং করানো জরুরি। কারণ তা অকাল মৃত্যুর হাত থেকে বাঁচায়। যে কারণে অন্তঃসত্ত্বা মায়েদের উদ্দেশে গবেষকরা পরমর্শ দিয়েছেন, বাচ্চাকে স্তন্যপান করান। এই গবেষণায় উল্লেখ করা হয়, আমেরিকায় মা ও শিশুর বছরে ৩,৪০০ অকালমৃত্যুর ঘটনা ঘটে। যার সঙ্গে যোগ রয়েছে সাবঅপটিমাল ব্রেস্টফিডিং-এর। ছয় মাসের কম সময় তাঁরা বাচ্চাকে বুকের দুধ দিয়েছেন। হার্ট অ্যাটাক, ডায়াবেটিস ও ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোমই এই অকালমৃত্যুর কারণ। যার নেপথ্যে রয়েছে অপর্যাপ্ত ব্রেস্টফিডিং। এই গবেষক দলের অন্যতম ডক্টর মেলিসা বার্টিক বলেন, এর সঙ্গে 'ভালো মা' বা 'খারাপ মা' হওয়ার কোনও সম্পর্ক নেই। বাচ্চার প্রতি মা কতটা কেয়ারিং সেসব ভেবে ব্রেস্টফিডিং করানোর চেয়ে বরং নিজেদের স্বাস্থ্যের কথা ভেবে বাচ্চাকে স্তন্যপান করান। উৎসঃ kalerkantho প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 10 Oct, 2015 দক্ষিণ এশিয়ায় জমজমাট কিডনি ব্যবসা! 05 Sep, 2015 অর্থলোভে অহেতুক অস্ত্রোপচার 04 Jul, 2015 ঘুষ দিন, সেবা নিন 06 Nov, 2016 পান সুপারিতে মুখের ক্যান্সার : সচেতনতায় লন্ডনের বাঙালী পাড়ায় সরকারী প্রচারাভিযান 26 Aug, 2016 বড়দের ওষুধ খাচ্ছে শিশুরা 07 Aug, 2016 রেডিয়েশনের ক্যান্সার ঝুঁকিতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ! 22 Jun, 2016 বোমা তৈরির সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেক বিস্কুট 21 Jun, 2016 অ্যাসিড ও কাপড়ের রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কোমল পানীয়! 28 Apr, 2016 সাবধান, লিচুতে নতুন ভাইরাস 22 Apr, 2016 সেবা নয়, বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে বারডেম হাসপাতাল 09 Apr, 2016 শিশুখাদ্যে প্লাস্টিক: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভবিষ্যত! 09 Apr, 2016 দেশের শতভাগ মিষ্টি, ৭৫ ভাগ সয়াবিন তেলে ভেজাল 09 Apr, 2016 ১০ টাকার ডাক্তার! 16 Feb, 2016 শেকৃবিতে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উদ্ভিদ 07 Feb, 2016 বাংলাদেশেও ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্মাতে পারে 04 Feb, 2016 শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে, কারণ ফাস্টফুড 03 Feb, 2016 প্রতিবন্ধিত্বের ৩ শতাংশই ভুল চিকিৎসায় 01 Feb, 2016 দেশে নতুন রোগের প্রকোপ 27 Jan, 2016 সাবধান! মাছ-মুরগির খাদ্যে ক্যানসারের বীজ 27 Jan, 2016 ভয়ানক এক রোগে আক্রান্ত দেশের লাখো টিন এজার, যুবক-যুবতী ! 27 Jan, 2016 মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া >>শাকসবজিও নিরাপদ নয়! 26 Jan, 2016 পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে যে ৭৫ হাসপাতাল 21 Jan, 2016 পাউরুটিতে জেলির নামে এ কী ব্যবহার হচ্ছে ! 16 Jan, 2016 বিষাক্ত কয়েলের ধোঁয়ায় কমছে প্রজনন ক্ষমতা 16 Jan, 2016 নেত্রকোনার অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু,আক্রান্ত অনেকে 28 Dec, 2015 ভিডিও >> অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত 24 Dec, 2015 অ্যান্টিবায়োটিক ‘নেশা’ ঘরে-ঘরে 20 Dec, 2015 মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দামি খাবার দেশে! 17 Dec, 2015 ‘মানবিক ভুল!’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই অজুহাত আর কতদিন? 06 Dec, 2015 ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ, খুলে দেয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে নদীর পানি সবচেয়ে দূষিত Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> পরিবেশ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশে নদীর পানি সবচেয়ে দূষিত 17 Sep, 2016 .এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের ৪৮টি দেশের মধ্যে নদীর পানি সবচেয়ে বেশি দূষিত হচ্ছে বাংলাদেশে। আর নদী অববাহিকাগুলোর মধ্যে সবচেয়ে অবনতি হয়েছে নেপাল, ভারত, বাংলাদেশের ভেতর দিয়ে বয়ে যাওয়া গঙ্গা অববাহিকার পানি। একটি আন্তর্জাতিক গবেষণা প্রতিবেদনে এ চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। ‘এশিয়ান ওয়াটার ডেভেলপমেন্ট আউটলুক-২০১৬’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই অঞ্চলের দেশগুলোর পানিসম্পদের অবস্থা তুলে ধরা হয়েছে। ওই প্রতিবেদনে জাতীয় পানি নিরাপত্তার দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থানকে বিপজ্জনক বা ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে। এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের ৪৮টি দেশের মধ্যে তুলনা করে প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে এশীয় উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। এতে দেখানো হয়েছে, বাংলাদেশে মাটির ওপরের ও নিচের—দুই ধরনের পানিরই অবস্থা খারাপ। মাটির নিচের পানি উত্তোলনের ঝুঁকিপূর্ণ প্রবণতাও বাংলাদেশে অনেক বেশি। প্রতিবেদনে জাতীয় পানি নিরাপত্তা ইনডেক্সে সবচেয়ে খারাপ অবস্থানে থাকা দেশগুলো হচ্ছে ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, আফগানিস্তান ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপদেশ কিরিবাতি। প্রতিবেদনটি সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে এডিবির জ্ঞান ব্যবস্থাপনা ও টেকসই উন্নয়ন বিভাগের প্রধান ব্যাং ব্যাং সুসানটোনো বলেন, এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চল পানি নিরাপত্তার দিক থেকে পৃথিবীর অন্যতম ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল। পানি খাতের সুরক্ষা ছাড়া এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়ন ধরে রাখা যাবে না। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, শহর ও শিল্পাঞ্চলগুলোর ৮০ শতাংশ পয়োবর্জ্য কোনো ধরনের পরিশোধন ছাড়াই পানিতে ফেলা হচ্ছে। এর ফলে নদীগুলোতে রাসায়নিক পদার্থের দূষণ বাড়ছে। নদীর স্বাস্থ্য দিন দিন আরও খারাপ হচ্ছে। নদীর স্বাস্থ্যের অবনতির দিক থেকে শীর্ষে গঙ্গা অববাহিকার দেশ ভারত, বাংলাদেশ ও নেপাল। ভূগর্ভের পানির অতিব্যবহার প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ প্রতিবছর ভূগর্ভ থেকে ৩০ দশমিক ২১ ঘন কিলোমিটার (কিউবিক কিলোমিটার) পানি উত্তোলন করে। এর ৮৬ শতাংশই ব্যবহৃত হয় কৃষির সেচকাজে। বাকি ১৩ শতাংশ গৃহস্থালি কাজে ও ১ শতাংশ পানি শিল্পের কাজে ব্যবহৃত হয়। ভূগর্ভের পানি অতিব্যবহারের দিক থেকে বাংলাদেশের অবস্থান ষষ্ঠ। ভূগর্ভের পানি সবচেয়ে বেশি ব্যবহার করে ভারত। এরপরই যুক্তরাষ্ট্র, পাকিস্তান ও ইরানের অবস্থান। ভূগর্ভ থেকে অতিমাত্রায় পানি উত্তোলনকে টেকসই উন্নয়ন ও পরিবেশের জন্য হুমকি হিসেবে মনে করছে এডিবি। তবে এডিবির প্রতিবেদনে বাংলাদেশের ভূগর্ভ থেকে মোট উত্তোলিত পানির যে হিসাব দেওয়া হয়েছে, তার চেয়ে পরিস্থিতি আরও খারাপ মনে করছেন বিশ্বব্যাংকের পরিবেশবিষয়ক পরামর্শক ইফতেখারুল আলম। তিনি এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, বাংলাদেশ প্রায় ১৬ লাখ বিদ্যুচ্চালিত সেচযন্ত্র ও ৩০ হাজার গভীর নলকূপের মাধ্যমে বছরে ৪৮ থেকে ৫২ কিউবিক কিলোমিটার পানি উত্তোলন করা হয়। এই প্রবণতা দেশের বরেন্দ্রসহ বিভিন্ন এলাকার পানির স্তর বিপজ্জনক জায়গায় নিয়ে যাচ্ছে। প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, ভারত, বাংলাদেশ, পাকিস্তান ও নেপালের কৃষকেরা ২ কোটি ৩০ লাখ সেচপাম্পের মাধ্যমে তাঁদের সেচের পানি উত্তোলন করেন, যা ভূগর্ভস্থ পানির স্তর নিচে নামিয়ে দিয়ে বড় ধরনের পরিবেশগত ঝুঁকি তো তৈরি করছেই, সেই সঙ্গে এই পানি তুলতে তাঁদের বছরে ৩৭৮ কোটি ডলার খরচ করতে হচ্ছে। বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন করপোরেশনের প্রধান প্রকৌশলী হাফিজ উল্লাহ এ ব্যাপারে প্রথম আলোকে বলেন, তাঁদের হিসাবে পাঁচ বছর আগে দেশের ভূগর্ভ থেকে উত্তোলন করা ৮২ শতাংশ পানি সেচকাজে ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে তা কমে ৭৭ শতাংশ হয়েছে। সরকার ভূ-উপরিস্থ পানির ব্যবহারে নানা ধরনের উদ্যোগ নেওয়ায় সামনের দিনগুলোতে পরিস্থিতির আরও উন্নতি হবে। পানি নিরাপত্তা জাতীয় পানি নিরাপত্তা ইনডেক্সের তালিকায় ৪৮টি দেশের মধ্যে সবচেয়ে ভালো অবস্থানে আছে যথাক্রমে নিউজিল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া ও সিঙ্গাপুর। নিচের দিক থেকে শীর্ষে বা সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় আছে আফগানিস্তান। ৪৬, ৪৫ ও ৪৪তম অবস্থানে রয়েছে যথাক্রমে পাকিস্তান, ভারত ও বাংলাদেশ। প্রতিবেদনটিতে জাতীয় পানি নিরাপত্তা ইনডেক্স তৈরি করা হয়েছে যে পাঁচটি সূচকের ভিত্তিতে সেগুলো হলো গৃহস্থালি পানি নিরাপত্তা, অর্থনৈতিক পানি নিরাপত্তা, নগরের পানি নিরাপত্তা, পরিবেশগত পানি নিরাপত্তা ও পানিসংক্রান্ত দুর্যোগ সহিষ্ণুতা। প্রতিবেদনটি সম্পর্কে জানতে চাইলে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান প্রকৌশলী ওয়ালি উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমি এখনো প্রতিবেদনটি দেখিনি, তাই না দেখে কোনো মন্তব্য করব না।’ পানিবিষয়ক এই প্রতিবেদন তৈরির প্রেক্ষাপট তুলে ধরে এডিবির ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০৫০ সাল নাগাদ বিশ্বের জনসংখ্যা এক হাজার কোটি হবে। বিশ্বের প্রধান শহরগুলোতে খাবার ও পানির চাহিদা বাড়বে। এই সময়ের মধ্যে গৃহস্থালি কাজে পানির চাহিদা ৫৫ শতাংশ ও কৃষিতে ৬০ শতাংশ বাড়বে। ফলে পানির টেকসই ব্যবহার এবং পানির উৎসগুলো সংরক্ষণের দরকার হবে। এই পরিস্থিতিতে বিশ্বের প্রধান অর্থনৈতিক শক্তিধর রাষ্ট্রগুলোর পানি নিরাপত্তার চিত্র তুলে ধরতেই এই প্রতিবেদন তৈরি করা হয়েছে। উৎসঃ প্রথম আলো প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 23 Sep, 2016 বুড়িগঙ্গায় ডলফিন 24 Aug, 2016 বিশ্বজুড়ে ভূমিকম্প, আতঙ্ক 20 May, 2016 কতটা শক্তিশালী হতে পারে ঘূর্ণিঝড় রোয়ানু? 18 May, 2016 ভারতের আন্তঃনদী সংযোগ >> দেশ পরিণত হবে মরুভূমিতে 14 May, 2016 বজ্রাঘাত নিয়ে উদ্বেগ উৎকণ্ঠা 02 May, 2016 কালও বৃষ্টি হতে পারে 27 Apr, 2016 উজানে ভারতের একতরফা বাঁধ নির্মাণ, হারিয়ে যাচ্ছে পঞ্চগড়ের অধিকাংশ নদী 17 Apr, 2016 বিশ্বজুড়ে ঘনঘন ভূমিকম্প, বড় কম্পনের হুঁশিয়ারি শীর্ষ বিজ্ঞানীর 17 Apr, 2016 উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ধেয়ে আসছে আকস্মিক বন্যা 16 Apr, 2016 চারটি তীব্র ভূমিকম্পের আশঙ্কা 22 Mar, 2016 পানি সংকটের ভয়াবহতা বাড়ছে 17 Mar, 2016 যমুনায় হাঁটুজল 23 Feb, 2016 তলিয়ে যাবে ঢাকা-কলকাতা-চট্টগ্রাম! 05 Feb, 2016 তিস্তার সব পানিই নিচ্ছে পশ্চিমবঙ্গ, এদেশে এখন শুধু বালুচর 29 Jan, 2016 পঞ্চগড়ের পথে পথে গোলাপি-বেগুনি রডোডেন্ড্রনের বাহার 26 Jan, 2016 যানজটে শারীরিক-মানসিক সমস্যায় ভোগে ৭৩% মানুষ 05 Jan, 2016 ২৬ মের মধ্যে ভয়াবহ ভূমিকম্প আসছে? 03 Dec, 2015 ফের সুন্দরবন বিপর্যয়ের শঙ্কা : ৭৪৫ টন ফ্লাইঅ্যাশ নিয়ে চরে আটকা এমভি শোভন 10 Nov, 2015 কৃষির হুমকি আফ্রিকান শামুক 13 Sep, 2015 ৮০০ বাঁধ তৈরি হবে পশ্চিমবঙ্গে! 08 Sep, 2015 মানুষকে ছায়া দেওয়াই যাঁর নেশা 02 Sep, 2015 শুক্রবার থেকে আরো বৃষ্টি! 24 Aug, 2015 ভিডিও >> মরুকরণের দিকে যাচ্ছে ঢাকা! 22 Aug, 2015 এক্সক্লুসিভ ভিডিও >> বিমানের উপর বজ্রপাত পড়লো যেভাবে 14 Aug, 2015 সালফারে ভারী হয়ে উঠছে ঢাকা-চট্টগ্রামের বাতাস 31 Jul, 2015 ঘূর্ণিঝড় ‘কোমেন’: নামকরণের নেপথ্যে 30 Jul, 2015 ঝড়ের তীব্র বেগে উড়ে গেলো মানুষ! 30 Jul, 2015 ভিডিও >> টেকনাফ ও সেন্টমার্টিনে আঘাত হেনেছে ‘কোমেন’ 29 Jul, 2015 সাগরে গভীর নিম্নচাপ>>৩-৪ ফ‍ুট জলোচ্ছ্বাসের আশঙ্কা;আতঙ্কে বাংলাদেশ-পশ্চিমবঙ্গ 23 Jul, 2015 ভারতের নদী সংযোগ প্রকল্প >> ভয়াবহ বিপর্যয় আসবে বাংলাদেশে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:স্বাস্থ্য Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য একটি ফলের রসেই গলবে কিডনির পাথর 31 October 2016, Monday অপারেশন ছাড়াই গলবে কিডনির পাথর। শুধু একটি ফলের রসেই কিডনির পাথর দূর হবে! হ্যাঁ, ভুল দেখেননি। বিনা অপারেশনেই আধাকাপ লেবুর রসে কিডনির পাথর দূর হবে। প্রতি বছর পৃথিবীতে ক্যানসারের চেয়ে বেশি মানুষের মৃত্যু হয় কিডনির সমস্যায়। কিডনি সমস্যার সবচেয়ে বড় কারণ কিডনি স্টোন। খবর জি নিউজের। অতিরিক্ত মাংস খেলেই বিস্তারিত >> সংবাদ শিরোনাম >> স্বাস্থ্য এইডস নির্মূল হবে আট দিনে! ক্যালসিয়ামের ঘাটতি পূরণ করবে ৭ খাবার সাবধান >> টানা বসে কাজ করলে যেসব সমস্যা হতে পারে আপনার শীতে রোগ থেকে দূরে থাকুন ৫ উপায়ে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা কি আসলেই কাজ করে 31 October 2016, Monday হোমিওপ্যাথি চিকিৎসার উপরেই নির্ভর করেন এমন মানুষের সংখ্যাও নেহাত কম নয়। হোমিওপ্যাথি ভক্তদের বক্তব্য এটা খুব ধীরে কাজ করে ও সঠিক কাজটা পরিপূর্ণভাবে করে। তবে সাম্প্রতিক গবেষণা বলছে, হোমিওপ্যাথি ৬৮ টি সমস্যার চিকিৎসা করলে একটিরও বিস্তারিত >> বেবি ট্যালকম পাউডারে কি ওভারিয়ান ক্যান্সার হয়? 31 October 2016, Monday যাদের বাড়িতে বাচ্চা রয়েছে, সে বাড়িতে জনসন অ্যান্ড জনসব বেবি পাউডার পাওয়া যাবে না তা হতে পারে না। কিন্তু মারাত্মক অভিযোগ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো আদালতের মুখোমুখি প্রতিষ্ঠানটি। অভিযোগটি হলো, জনসন অ্যান্ড জনসন বে বিস্তারিত >> স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে পাঁচ খাবার 30 October 2016, Sunday নারী শরীরের একটি প্রচলিত অসুখ স্তন ক্যানসার। ক্যানসার প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম। কিছু খাবার রয়েছে, যেগুলো স্তন ক্যানসার প্রতিরোধে কাজ করে। জীবনধারাবিষয়ক ওয়েবসাইট বোল্ডস্কাইয়ের স্বাস্থ্য বিভাগে প্রকাশিত হয়েছে এ-স বিস্তারিত >> ১ গ্লাস পানীয়র ম্যাজিকে বিদায় হবে মেদ! 29 October 2016, Saturday প্রতিদিন সকালে হেঁটে, ডায়েট ও শরীরচর্চা করেও মেদ কমাতে পারছেন না। তলপেটের চেপে বসা চর্বি যেন বার বার অবস্থানের বাইরে উকি দিচ্ছে। আয়নায় নিজেকে দেখে আপনার মন খারাপ হচ্ছে, শত চেষ্টা করেও কিছুতেই কমাতে পারছেন না বিস্তারিত >> দীর্ঘদিন বেঁচে থাকার পাঁচটি টিপস 28 October 2016, Friday জীবন একটাই। আর সেটার গড় আয়ুও দিনের পর দিন কেবলই কমছে। এই পরিস্থিতিতেও আপনি নিশ্চয়ই চাইবেন সুস্থ-সবলভাবে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে। কিন্তু আপনি এমনটা চাইলেই তো আর হবে না। কিছু পেতে গেলে কিছু দাম দিতে হয় আমাদের। আর এটা তো অনেক বিস্তারিত >> এই শীতে ফাটা পা : নো চান্স 28 October 2016, Friday শীত একেবারে দোড়গোড়ায় কড়া নাড়ছে৷ ত্বকের আর্দ্রতা কমতে শুরু করেছে ইতিমধ্যেই৷ শীতে কেতাদুরস্ত পোশাক তো বেছেছেন। কিন্তু, জুতা জোড়া খুলতেই বেরিয়ে এল এক জোড়া ফাটা পা। ব্যস, অমনি পুরো প্রেস্টিজ পাংচার। তাই এখন জেনে নি বিস্তারিত >> ভুয়া ডিগ্রীর ‘বড়’ ডাক্তার 28 October 2016, Friday বড় ডিগ্রী দেখিয়ে মোটা অঙ্কের ফি আদায় : ১৫ মাসে ভুল চিকিৎসায় ৩৫০ জনের মৃত্যু : ভুয়া ডাক্তারদের নির্মূলের দায়িত্ব আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর : বিএমডিসি সভাপতি নূরুল ইসলাম : রাজধানীর ভাটারা কুড়াতলী বাজারের রাসেল মেডিসিন ক বিস্তারিত >> শিশুর ঠোঁটে চুমু দিলে ভয়ানক বিপদ 31 October 2016, Monday শিশু লালন-পালন সহজ কাজ নয়। শিশুকে আদর করতে গিয়ে কখনও কখনও আমরা এমন কিছু করে থাকি যা শিশুর স্বাস্থের জন্য ঝুঁকিপূণ। অনেক শিশুকে আদর করতে গিয়ে ঠোঁটে চুমু খান বা শিশুর ঠোঁটের সঙ্গে নিজের ঠোঁট স্পর্শ করেন, এটি শি বিস্তারিত >> মেয়েদের দাড়ি-গোঁফের কারণ 30 October 2016, Sunday মাথাভর্তি চুল নারী-পুরুষ উভয়ের ব্যক্তিত্ব ও শোভা বাড়ায়, আর দাড়ি-গোঁফ পুরুষালি বৈশিষ্ট্য হলেও কখনও কখনও এটা নারীদের জন্য একটা বিব্রতকর সমস্যা হয়ে দেখা দেয়। চিকিৎসাশাস্ত্রে এ পরিস্থিতিকে হার্সুটিজম (Hirsutism) বিস্তারিত >> কিডনি ঠিক আছে তো? এই ৮ লক্ষণে সতর্ক হোন 30 October 2016, Sunday গায়ে ঘনঘন র‌্যাশ বেরোচ্ছে? সারাদিনে প্রস্রাব হয় খুব কম? গরমেও কম ঘামেন? আপনার কিডনি ঠিকঠাক কাজ করছে তো? কারণ, কিডনির কাজই হলো শরীর থেকে টক্সিন বা বর্জ্য পদার্থ বের করে দেওয়া। এককথায়, ছাকনির মতো কাজ করে বিস্তারিত >> ম্যামোগ্রাফির বিষয়ে জানুন 29 October 2016, Saturday ব্রেস্ট ক্যান্সার শনাক্ত করার জন্য ম্যামোগ্রাম কার্যকরী একটি পদ্ধতি। ম্যামোগ্রাম হচ্ছে ব্রেস্টের এক্সরে করার একটি পদ্ধতি। প্রায় এক শতাব্দী পূর্বে ব্রেস্টের টিস্যু পরীক্ষা করার জন্য প্রথম এক্সরে ব্যবহার করা হয়। বর্তমানে ম্য বিস্তারিত >> পুরুষের জন্য জন্মনিয়ন্ত্রণ ইনজেকশন 28 October 2016, Friday হরমোন ইনজেকশন পুরুষের জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য নিরাপদ ও কার্যকর পদ্ধতি বলে সমীক্ষায় দেখা গেছে। ২৭০ জন পুরুষের উপর চালানো পরীক্ষায় দেখা গেছে এই গর্ভনিরোধক ৯৬ শতাংশ ক্ষেত্রে কার্যকর। শতকরা চারজনের ক্ষেত্রে তাদের সঙ্গী গর্ভধ বিস্তারিত >> জঙ্গিদের ক্যাপটাগনের অহেতুক প্রচারণা! 28 October 2016, Friday গুলশান, নারায়ণগঞ্জ ও কল্যাণপুরে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর অভিযানে নিহত ১৮ জঙ্গির ভিসেরা ও রক্ত পরীক্ষার রিপোর্ট ২০ অক্টোবর প্রকাশিত হয়েছে। সকল পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর সবাই নিশ্চিত হয়েছে যে ড্রাগ জাতীয় কোনো কিছ বিস্তারিত >> নিয়ম মেনে হাঁটুন ওজন কমবে 27 October 2016, Thursday হাঁটাহাঁটি করা শরীরের জন্য ভালো। আরও ভালো হয় যদি নিয়ম মেনে হাঁটেন। এতে মেদ কমল, ওজন কমল, কিন্তু শরীরের কোন ক্ষতি হলো না। তাছাড়া দীর্ঘক্ষণ হাঁটাহাঁটি করার সময় না থাকলে নিয়ম মেনে ধাপে ধাপে হাঁটতে পারেন। একই কা বিস্তারিত >> হঠাৎ মাংসপেশি টেনে ধরলে 31 October 2016, Monday বেশিরভাগ মানুষই জীবনে বিভিন্ন সময় এ সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে। বিশেষ করে হাঁটুর নিচের মাংসপেশিতে (যাকে মেডিকেল পরিভাষায় কাফ মাসল বলা হয়) এ সমস্যা বেশি দেখা দেয়। কারও কারও ক্ষেত্রে রাতে বিছানায় ঘুমের মধ্যে হঠাৎ পায় বিস্তারিত >> অলিভ অয়েল মাস্কে কমবে বয়স! 30 October 2016, Sunday পরিবেশ জানান দিচ্ছে শীতের আগমন। শীতের শুষ্ক বায়ু, কম তাপমাত্রা ও আদ্রতা আপনার ত্বক-ঠোঁট এবং শরীরের অন্যান্য অংশকে নানাভাবে ক্ষতি করে। শীত আপনার ত্বককে শুষ্ক, স্তরপূর্ণ এবং নিস্তেজ করে দেয়। এ কারণে শীতকালে বিস্তারিত >> আপনি কেন একটুতেই অসুস্থ হয়ে পড়েন? 29 October 2016, Saturday ক’দিন হলো বেশ শীত পড়েছে৷ যদিও ক্যালেন্ডার বলছে জার্মনিতে আজ থেকে শীতকালের শুরু৷ ঋতু পরিবর্তনের সময় অনেকেরই অসুখ-বিসুখ লেগে থাকে৷ তাই সব ঋতুতে সুস্থ ও আনন্দে থাকার কিছু টিপস পাবেন আজকের প্রতিবেদনে৷ খাব বিস্তারিত >> ব্যায়ামে লাঘব হয় বয়স্কদের স্মরণশক্তির সমস্যা 29 October 2016, Saturday নিয়মিত ব্যায়ামে শুধু শারীরিক নয়, মানসিক স্বাস্থ্যেরও যে উন্নতি ঘটে, তা প্রতিষ্ঠিত সত্য। ফলে দূরে থাকে অ্যালঝেইমার ও স্মৃতিবৈকল্যের মতো মস্তিষ্কের রোগ। একই সঙ্গে হূদরোগ, স্ট্রোক, উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, স্থূলতা ও বিষণ্ বিস্তারিত >> ১ গ্লাস পানীয়র ম্যাজিকে বিদায় হবে মেদ! 28 October 2016, Friday প্রতিদিন সকালে হেঁটে, ডায়েট ও শরীরচর্চা করেও মেদ কমাতে পারছেন না। তলপেটের চেপে বসা চর্বি যেন বার বার অবস্থানের বাইরে উকি দিচ্ছে। আয়নায় নিজেকে দেখে আপনার মন খারাপ হচ্ছে, শত চেষ্টা করেও কিছুতেই কমাতে পারছেন না বিস্তারিত >> যৌনক্ষমতা বৃদ্ধিতে কালোজিরা 28 October 2016, Friday খাবারে ভিন্ন স্বাদ আনতে আমরা হরহামেশাই কালোজিরা ব্যবহার করে থাকি। কিন্তু আপনি জানেন কি, কালোজিরার ব্যবহার শুধু খাবারে ভিন্ন স্বাদ আনতেই সীমাবদ্ধ নয়। বরং এর বহুবিধ চিকিৎসাগুণও রয়েছে। কালোজিরা রোগ নিরাময়ের এক গ বিস্তারিত >> মেদ কমাতে ৭ ধরনের খাবার 27 October 2016, Thursday কিছু খাবার আছে যেগুলো শরীরের চর্বি কাটাতে সাহায্য করে। বিশেষ করে পেটের মেদ কমাতে উপকারী এইসব খাবার সম্পর্কে জানা থাকলে ওজন নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হয়। এই বিষয়ে বিস্তারিত জানাচ্ছেন পুষ্টিবিদ আসফিয়া আজিম। ওজন কমাতে আমরা বিস্তারিত >> « পূর্ববর্তী সংবাদ পরবর্তী সংবাদ » Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:অনৈতিক রিং বাণিজ্য, অতিরিক্ত মূল্য গুনতে হয় রোগীকে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য অনৈতিক রিং বাণিজ্য, অতিরিক্ত মূল্য গুনতে হয় রোগীকে 29 Sep, 2016 যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠান বোস্টন সায়েন্টিফিকের তৈরি প্রোমিউস প্রিমিয়ার নামে হার্টের একটি রিং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে রোগীর কাছে বিক্রি করা হয় দেড় লাখ টাকায়। রাজধানীর বেসরকারি অ্যাপোলো হাসপাতালে একই রিং পরানোর জন্য রোগীর কাছ থেকে এক লাখ ৮৬ হাজার ২৫০ টাকা নেওয়া হয়। দেশে ওই রিং সরবরাহ করে মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড নামে একটি প্রতিষ্ঠান। এবোট নামে যুক্তরাষ্ট্রের জাইনেক এক্সপিডিশন নামের আরেকটি প্রতিষ্ঠানের তৈরি রিং জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে দেড় লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়। এই রিং ইউনাইটেড হাসপাতালে বিক্রি করা হয় আড়াই লাখ টাকায়। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান কার্ডিয়াক কেয়ার লিমিটেড। ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন, ইব্রাহিম কার্ডিয়াক হাসপাতাল, ল্যাবএইড কার্ডিয়াকসহ বিভিন্ন হাসপাতালে হার্টের বিভিন্ন ধরনের রিংয়ের মূল্য জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের তুলনায় ১০ হাজার থেকে শুরু করে এক লাখ টাকা পর্যন্ত বেশি নেওয়া হয়। সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান একই হওয়া সত্ত্বেও কেন হার্টের রিংয়ের দাম কমবেশি হবে- এ প্রশ্নের উত্তর খুঁজতে গিয়ে সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলেছে সমকাল। অ্যাপোলো হাসপাতালের কার্ডিওলজি বিভাগের সিনিয়র কনসালট্যান্ট ডা. একিউএম রেজা বলেন, সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে বেসরকারি হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ আলোচনা করে রিংয়ের মূল্য নির্ধারণ করে। সরকারি হাসপাতালের তুলনায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে তারা বেশি মূল্যে হার্টের রিং সরবরাহ করে। ফলে মূল্যের পার্থক্য তৈরি হয়। মূল্যে পার্থক্যের বিষয়টি একটু ভিন্নভাবে ব্যাখ্যা করলেন সরবরাকারী প্রতিষ্ঠান কার্ডিয়াক কেয়ার লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মোহাম্মদ জহির আহমেদ। তিনি সমকালকে বলেন, 'পাঁচতারকা সোনারগাঁও হোটেলে এক কাপ কফি খেতে আপনাকে তিনশ' থেকে চারশ' টাকা দিতে হবে। একই কফি রাস্তার পাশে দোকান থেকে কিনে খেতে মূল্য পড়বে ১০ থেকে ১৫ টাকা।' বেসরকারি হাসপাতালকে তিনি পাঁচতারকা হোটেলের সঙ্গে তুলনা করেছেন। জহির আহমেদ আরও বলেন, হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের মাধ্যমে রিং বিক্রি করা হয়। রিং সরাসরি রোগীর কাছে বিক্রি করা গেলে মূল্য কম পড়ত। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের মাধ্যমে বিক্রি করার কারণে কেন মূল্য কমানো যায় না- এ প্রশ্নের উত্তর দিতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। তবে অনুসন্ধানে জানা গেছে, রিং পরানো নিয়ে কমিশন বাণিজ্যের পসরা সাজিয়ে বসেছেন একশ্রেণীর অসাধু ব্যবসায়ী ও চিকিৎসক। শতাধিক চিকিৎসক ও ২৫ রিং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান নিয়ন্ত্রণ করছে হার্টের রিং বাণিজ্য। দু'পক্ষের মধ্যে সমঝোতার পরই রিং বিক্রি হয়। রোগীকে একটি রিং পরানো বাবদ ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত চিকিৎসককে কমিশন দেন ব্যবসায়ীরা। এতে রিংয়ের মূল্য বেড়ে যায়। সাধারণ মানুষ এ কমিশন বাণিজ্যের কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছেন। হার্টের রিং সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানের মধ্যে আছে মেডি গ্রাফিক ট্রেডিং লিমিটেড, কার্ডিয়াক কেয়ার, ওরিয়েন্ট এক্সপোর্ট ইমপোর্ট কোম্পানি, কার্ডিয়াক সল্যুয়েশন, ইউনিমেড, বায়োভাসকুলার, ওমেগা হেলথ কেয়ার, গেল্গাবাল করপোরেশন, দ্য হার্টবিট, জিন ইন্টারন্যাশনাল মেডিকেল অ্যান্ড সার্জিক্যাল এক্সপোর্ট ইমপোর্ট লিমিটেড, অ্যাডভান্সড মেডিটিস, বিজনেস লিঙ্ক, ইপিক টেকনোলজিস, হার্ট কোয়াক, জেএমআই হসপিটাল রিক্যুইসিট এমএফজি, বিভা ইন্টারন্যাশনাল, অ্যালায়েন্স মেডিকেল, লাইফ লাইন ইন্টারন্যাশনাল, আমিন সার্জিক্যাল, করোনারি কেয়ার অ্যান্ড মেডিকেল সার্ভিসেস, আর্টিকুলার, এশিয়া প্যাসিফিক মেডিকেলস, দ্য স্পন্দন লিমিটেড। এসব প্রতিষ্ঠানের যোগজাসশে এ অনৈতিক কাজ চলছে দীর্ঘদিন ধরে। শুধু হার্টের রিং নয়, হৃদরোগ চিকিৎসায় ব্যবহৃত পেসমেকার, বেলুন গাইডওয়্যার, ক্যাথেটার, ভাল্ব, অক্সিজেনেটর ইত্যাদি নিয়েও অবৈধ বাণিজ্য চলছে। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে সরকারিভাবে প্রতিটি ৩৪ হাজার টাকা করে ৪৮টি এবং ৩৬ হাজার টাকা করে ১০২টি হার্টের রিং কেনা হয় প্রায় ৫৪ লাখ টাকায়। এসব রিং নির্ধারিত সময়ে রোগীদের না পরানোয় মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে। বাণিজ্য করা যাবে না- এ কারণে বিনামূল্যের এসব রিং দরিদ্র রোগীদের দেওয়া হয়নি বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। জানা গেছে, ৩০ হাজার টাকা থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্তরে তিন লাখ টাকার রিং বাজারে পাওয়া যায়। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় ও জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের ভেতরে অন্তত অর্ধশত প্রতিষ্ঠানের বিক্রয় প্রতিনিধিরা ঘুরে বেড়ান। ক্যাথল্যাবের আশপাশে তারা অবস্থান করেন। সরাসরি রোগী বা তাদের স্বজনদের সঙ্গে তারা কথা বলেন না। সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের সঙ্গে রোগী বা তার স্বজনদের কথা চূড়ান্ত হলে বিক্রয় প্রতিনিধিদের ডাকা হয়। এর পরই রিং বিক্রি করা হয়। পরিচয় গোপন রেখে তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, একটি রিং বিক্রি করিয়ে দেওয়ার বিনিময়ে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসককে ১০ থেকে ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত কমিশন দিতে হয়। কমিশনের অর্থ কেউ নগদ, আবার কেউ বিদেশ ভ্রমণে স্পন্সরের জন্য নিয়ে থাকেন। বিভিন্ন হাসপাতালে যে চিকিৎসকরা রিং পরানোয় অবৈধ কমিশন নেন, তাদের ইউনিটে রোগী ভর্তি হলে ৩০ হাজার টাকার রিং ৫০ হাজার টাকা, ৫০ হাজার টাকার রিং ৮০ হাজার টাকায় কিনতে হয় রোগীদের। হাতেগোনা যে ক'জন চিকিৎসক কমিশন নেন না, তাদের ওয়ার্ডে রিং পরানো রোগীরা ভর্তিই হতে পারেন না। সৌভাগ্যক্রমে এ চিকিৎসকদের ওয়ার্ডে ভর্তি হতে পারলে রোগীরা আর্থিক ক্ষতির হাত থেকে রেহাই পান। রিং বাণিজ্য ঠেকাতে চলতি বছরের ১৯ মে জাতীয় হৃদরেগ ইনস্টিটিউট (এনআইসিভিডি) কর্তৃপক্ষ বিভিন্ন মডেলের রিংয়ের সর্বোচ্চ বিক্রয়মূল্য নির্ধারণ করে দেয়। তালিকায় উল্লেখ আছে, ড্রাগ ইলিউটিং রিংয়ের দাম এক লাখ থেকে এক লাখ ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত। একই মানের রিং ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশনে এক লাখ ২০ হাজার থেকে এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা, ল্যাবএইড কার্ডিয়াকে এক লাখ ৪০ হাজার থেকে দুই লাখ টাকা, ইব্রাহিম কার্ডিয়াকে এক লাখ ৩০ হাজার থেকে এক লাখ ৫৫ হাজার টাকা এবং বিএসএমএমইউতে এক লাখ ৭৫ থেকে দুই লাখ টাকা পর্যন্ত নেওয়া হয়। মূল্য তালিকা প্রকাশের পরও হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে গোপনে রিং বাণিজ্য চলছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে বিষয়টি মনিটরিং করা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানের পরিচালক অধ্যাপক ডা. এস টি এম আবু আজম। তিনি সমকালকে বলেন, মূল্য তালিকার বাইরে রিংয়ের মূল্য বেশি নেওয়া হলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি যতদিন পরিচালক হিসেবে আছেন, ততদিন রিং নিয়ে কাউকে বাণিজ্য করতে দেবেন না। হৃদরোগ বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, হার্টের রক্তনালি সংকুচিত হয়ে পড়লে রক্ত চলাচল স্বাভাবিক রাখার একটি পদ্ধতি হচ্ছে স্টেন্টিং বা রিং পরানো। এনজিওগ্রাম করে রক্তনালিতে এক থেকে তিনটি পর্যন্ত ব্লক ধরা পড়লে রিং পরানোর পরামর্শ দেওয়া হয়। রিং পরানোবিষয়ক বিশেষায়িত কোর্স 'ফেলোশিপ অন ইন্টারভেনশন' সম্পন্ন করা চিকিৎসকরা সুষ্ঠুভাবে কাজটি করতে পারেন। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে মাত্র তিনজন চিকিৎসক এ কোর্স সম্পন্ন করেছেন। একজন ইলেকট্রো ফিজিওলজিস্ট রয়েছেন। অথচ রিং পরিয়ে কমিশন নিচ্ছেন অর্ধশতাধিক চিকিৎসক। হার্ট ফাউন্ডেশনের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও জাতীয় অধ্যাপক ব্রিগেডিয়ার (অব.) আবদুল মালিক সমকালকে বলেন, স্নাতকোত্তর ডিগ্রি এবং বিশেষজ্ঞ কার্ডিওলজিস্টের অধীনে তিন থেকে পাঁচ বছর হাতেকলমে অভিজ্ঞতা অর্জন ছাড়া রিং পরানোর কাজে হাত দেওয়া উচিত নয়। অভিযোগ আছে, রক্তনালি সামান্য সংকুচিত হলেই চিকিৎসকরা রোগীকে রিং পরাতে প্রলুব্ধ করেন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন চিকিৎসক বলেন, যে সমস্যা মাত্র ১৫ হাজার টাকার বেলুন থেরাপিতে সমাধান করা যায়, তা সমাধান করতে রিং পরিয়ে আরও ২০ হাজার টাকা বেশি হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে। রিং বাণিজ্যের বিরুদ্ধে কয়েক বছর ধরে সরব রয়েছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্ডিওলজি বিভাগের অধ্যাপক ডা. চৌধুরী মেশকাত আহমেদ। বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের কাছে রিংয়ের মূল্য নিয়ে একাধিকবার তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেন। সহকর্মীরা অনেকে তার বিরুদ্ধে অবস্থানও নিয়েছিলেন। চৌধুরী মেশকাত আহমেদ বলেন, বিক্রয় প্রতিনিধি ও চিকিৎসকদের একটি চক্র অবৈধ রিং বাণিজ্যের সঙ্গে জড়িত। তাদের অবৈধ সমঝোতার কারণে গরিব ও অসহায় রোগীদের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে দুই থেকে তিনগুণ বেশি দামে রিং কিনতে হচ্ছে। অসহায় ও গরিব রোগীরা অর্থাভাবে হার্টের চিকিৎসা নিতে পারছে না। এ বিষয়টি তাকে খুবই ব্যথিত করে। উচ্চমূল্যের কারণে হার্টের রিং লাগানোর সামর্থ্য অনেক রোগীর নেই। অথচ এই রিংয়ের দাম অনৈতিকভাবে দ্বিগুণ, তিনগুণ বেশি রাখা হচ্ছে। নৈতিকতার প্রতি দায়বদ্ধতার কারণে তিনি বিষয়টি লিখিতভাবে কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেন বলে জানান। স্বাস্থ্যমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম সমকালকে বলেন, হার্টের রিং নিয়ে বাণিজ্য বন্ধে পদক্ষেপ নেওয়া হবে। দরিদ্র মানুষের স্বাস্থ্যসেবা নিয়ে কাউকে বাণিজ্য করতে দেওয়া হবে না। যত দ্রুত সম্ভব সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে এ বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। উৎসঃ সমকাল প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 10 Oct, 2015 দক্ষিণ এশিয়ায় জমজমাট কিডনি ব্যবসা! 05 Sep, 2015 অর্থলোভে অহেতুক অস্ত্রোপচার 04 Jul, 2015 ঘুষ দিন, সেবা নিন 06 Nov, 2016 পান সুপারিতে মুখের ক্যান্সার : সচেতনতায় লন্ডনের বাঙালী পাড়ায় সরকারী প্রচারাভিযান 26 Aug, 2016 বড়দের ওষুধ খাচ্ছে শিশুরা 07 Aug, 2016 রেডিয়েশনের ক্যান্সার ঝুঁকিতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ! 22 Jun, 2016 বোমা তৈরির সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেক বিস্কুট 21 Jun, 2016 অ্যাসিড ও কাপড়ের রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কোমল পানীয়! 28 Apr, 2016 সাবধান, লিচুতে নতুন ভাইরাস 22 Apr, 2016 সেবা নয়, বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে বারডেম হাসপাতাল 09 Apr, 2016 শিশুখাদ্যে প্লাস্টিক: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভবিষ্যত! 09 Apr, 2016 দেশের শতভাগ মিষ্টি, ৭৫ ভাগ সয়াবিন তেলে ভেজাল 09 Apr, 2016 ১০ টাকার ডাক্তার! 16 Feb, 2016 শেকৃবিতে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উদ্ভিদ 07 Feb, 2016 বাংলাদেশেও ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্মাতে পারে 04 Feb, 2016 শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে, কারণ ফাস্টফুড 03 Feb, 2016 প্রতিবন্ধিত্বের ৩ শতাংশই ভুল চিকিৎসায় 01 Feb, 2016 দেশে নতুন রোগের প্রকোপ 27 Jan, 2016 সাবধান! মাছ-মুরগির খাদ্যে ক্যানসারের বীজ 27 Jan, 2016 ভয়ানক এক রোগে আক্রান্ত দেশের লাখো টিন এজার, যুবক-যুবতী ! 27 Jan, 2016 মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া >>শাকসবজিও নিরাপদ নয়! 26 Jan, 2016 পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে যে ৭৫ হাসপাতাল 21 Jan, 2016 পাউরুটিতে জেলির নামে এ কী ব্যবহার হচ্ছে ! 16 Jan, 2016 বিষাক্ত কয়েলের ধোঁয়ায় কমছে প্রজনন ক্ষমতা 16 Jan, 2016 নেত্রকোনার অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু,আক্রান্ত অনেকে 28 Dec, 2015 ভিডিও >> অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত 24 Dec, 2015 অ্যান্টিবায়োটিক ‘নেশা’ ঘরে-ঘরে 20 Dec, 2015 মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দামি খাবার দেশে! 17 Dec, 2015 ‘মানবিক ভুল!’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই অজুহাত আর কতদিন? 06 Dec, 2015 ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ, খুলে দেয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 08 July 2016, Friday মার্কিন ন্যাশনাল ইন্টেলিজেন্সের ডিরেক্টর জেমস ক্ল্যাপার এ বছর ফেব্রুয়ারির নয় তারিখে ইউএস আর্মড সার্ভিসেস কমিটি ও সিনেট সিলেক্ট কমিটির কাছে একটি লিখিত প্রতিবেদন পেশ করেছিলেন। এ ধরনের প্রতিবেদনকে বলা হয় ‘Statement for the Record’। অনেকটা ভবিষ্যতে রেফারেন্সের জন্য নথি করে রাখার মতো ব্যাপার। হোলি আর্টিসানের রক্তপাতের পরে এখন তা রেফারেন্স হয়ে গিয়েছে। বাংলাদেশ সম্পর্কে তাঁর লিখিত মন্তব্য ছিল ছোট এবং খুবই সংক্ষিপ্ত। পুরাটাই এখানে তুলে দিচ্ছি: “Prime Minister Sheikh Hasina’s continuing efforts to undermine the political opposition in Bangladesh will probably provide openings for transnational terrorist groups to expand their presence in the country. Hasina and other government officials have insisted publicly that the killings of foreigners are the work of the Bangladesh Nationalist Party and the Bangladesh Jamaat-e Islami political parties and are intended to discredit the government. However, ISIL claimed responsibility for 11 high-profile attacks on foreigners and religious minorities. Other extremists in Bangladesh—including Ansarullah Bangla Team and Al-Qa’ida in the Indian Subcontinent (AQIS)—have claimed responsibility for killing at least 11 progressive writers and bloggers in Bangladesh since 2013”. (দেখুন, Statement for the Record Worldwide Threat Assessment of the U.S. Intelligence Community) । জেমস ক্ল্যাপারের মূল কথা হচ্ছে শেখ হাসিনা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে যেভাবে ক্রমাগত দমনপীড়ন করছেন সম্ভবত সেটাই বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠিগুলোর উপস্থিতি বাংলাদেশে সম্প্রসারিত করবে। শেখ হাসিনা এবং তার সরকারী কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে জোর দিয়ে বলছে বাংলাদেশে বিদেশীদের হত্যা করার যেসকল ঘটনা বাংলাদেশে ঘটছে সেটা ক্ষমতাসীন সরকারকে বিব্রত করবার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল ও জামায়াতে ইসলামীর কাণ্ড। আইএসআইএল এই সকল হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করছে অথচ শেখ হাসিনা এবং তার কর্মকর্তারা দোষ চাপাচ্ছেন বিরোধী দলের ওপর। সারমর্মে বলা হোলীকদিকে দমন পীড়ন অন্যদিকে বিরোধী রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে দোষারোপ রি দুটি কারণই বাংলাদেশে আইসিসের মতো আন্তর্জাতিক গোষ্ঠির উপস্থিতি ও বিস্তৃতির কারন ঘটাবে। হোলি আর্টিসানের রক্তক্ষয়ী ঘটনা প্রমাণ করছে বাংলাদেশ সম্পর্কে মার্কিন গোয়েন্দাদের মূল্যায়ন কমবেশী সঠিক। কিন্তু প্রশ্ন অন্যত্র। সেটা হোল মার্কিন গোয়েন্দাদের সঠিক পর্যবেক্ষণ সত্ত্বেও বাংলাদেশে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আইএস-এর হোলি আর্টিসানে সরব উপস্থিতি জানান দেবার ঘটনা রোধ করবার ক্ষেত্রে কোন কার্যকর পদক্ষেপ নিল না কিম্বা নিতে পারলনা কেন? তারা আদৌ রোধ করতে পারত কিনা তার আলাদা মূল্যায়ন হতে পারে। কারন সেটা সব সময় ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে না। তবে এটা স্পষ্ট যে বাংলাদেশে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশের ক্ষয়, ভয়াবহ মানবাধিকার লংঘন এবং বিরোধী দলের ওপর দমন পীড়ন বন্ধ করবার ক্ষেত্রে দুই একটি মৌখিক কূটনৈতিক উদ্বেগ প্রকাশ করা ছাড়া দন্ত্রাস ও সহিংসতা প্রতিরোধে বাংলাদেশে দৃশ্যমান মার্কিন কূটনৈতিক তৎপরতা নাই বললেই চলে। বাংলাদেশে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠিগুলোর তৎপরতা বৃদ্ধি পাবার যে আশংকা মার্কিন গোয়েন্দারা করেছে তার রাজনৈতিক কারণ রয়েই গিয়েছে। বৈধ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচঞ্ছারা তিনি বহাল তবিয়তেই আছেন এবং বিরোধী দলের বিরুদ্ধে দমন পীড়ন শেখ হাসিনা অব্যাহত রেখেছেন। পরিণতি হলি আর্টিসানের রক্তপাত। তাহলে প্রশ্ন হচ্ছে বাংলাদেশে একটি গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক পরিবেশ সৃষ্টির ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ব্যর্থতার কারণ কি? এর উত্তর আমরা উন্নাসিক ভাবে দিতে পারি। যেমন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এটাই তো করে, একনায়কী ও ফ্যাসিস্ট শক্তির সঙ্গেই তো তাদের সখ্যতা। কিন্তু ব্যাপারটা এতো সরল নয়। অতএব উন্নাসিক না হয়ে বোঝার চেষ্টা করা যাক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জন্য এশিয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ। চিনকে মোকাবিলা করা , সমুদ্রে সামরিক আধিপত্য বজায় রাখা, বাণিজ্যের সুবিধা গ্রহণ করা, সর্বোপরী চিন ও ভারতের সঙ্গে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতার ক্ষেত্রে অগ্রগামী থাকা ইত্যাদি। সেই ক্ষেত্রে দক্ষিণ এশিয়া এবং বিশেষ ভূ-কৌশলগত কারণে বাংলাদেশ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই পরিপ্রেক্ষিতে বাংলাদেশের বিপুল সংখ্যক তরুণকে আইসিস, জেএম বি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম জাতীয় রাজনৈতিক আদর্শ ও সামরিক তৎপরতার দিকে ঠেলে দেওয়া মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সামগ্রিক স্বার্থের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। তাহলে মার্কিন যুক্রাষত্রের ব্যর্থতার বিচার উন্নাসিক কায়দায় দিলে চলছে না। ব্যর্থতার প্রধান কারণ হচ্ছে সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হিসাবে আমেরিকার এখন ক্ষয়িষ্ণু অবস্থা। বিশ্বজুড়ে অর্থনৈতিক মন্দা এবং মধ্য প্রাচ্যের যুদ্ধে জড়িত হবার কারণে অর্থনৈতিক সংকট দেখা দিয়েছে। সাধারণ ভাবে বলা যায় ওয়াল স্ট্রিট ও সমরাস্ত্র শিল্পের আঁতাতের মধ্য দিয়ে বিশ্ব ব্যবস্থায় আধিপত্য বজায় রাখার চেষ্টার মধ্যে ফাটল দেখা যাচ্ছে। আমেরিকা যথেষ্ট ক্ষয়িষ্ণু সাম্রাজ্যবাদী শক্তি হয়ে গেছে। এই অবস্থায় এ’বস্থায় যে আমেরিকা ভারতকে তোলা তোলা করে তোয়াজ করে চলবে তাতে অবাক হবার কিছু নাই। তোয়াজ করে চলার আরেকটি বড় কারণ হচ্ছে চিনকে ঠেকানো। সে কারনে সে হিসাবে বাংলাদেশ প্রশ্নে দিল্লীর নীতির বিপরীতে দাঁড়িয়ে ওয়াশিংটন স্বাধীন ভাবে সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধাগ্রস্ত অথবা অক্ষম। ফলে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে দিল্লীর নীতির বাইরে আর কোন ভূমিকা রাখতে আমরা ওয়াশিংটনকে হলি আর্টিসানের ঘটনা ঘটা পর্যন্ত দেখি নি। দেখা যায় না। দিল্লী শেখ হাসিনাকেই ক্ষমতায় রাখতে চেয়েছে, বাংলাদেশের ক্ষমতাসীনদের নীতি আর দিল্লীর নীতি অভিন্ন। সেটা হোল শেখ হাসিনা ক্ষমতায় থাকুক এবং তা দীর্ঘায়িত করতে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে নির্মূল করুক। এই অবস্থায় বাংলাদেশের পরিস্থিতি বদলাতে চাইলে বাংলাদেশের প্রতি দিল্লীর নীতি বদলানোর কাজ মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে করতে হবে আগে। মূল অক্ষমতাতা এখানে। এই সত্য এখন আগের চেয়ে স্পষ্ট যে নরেন্দ্র মোদী ক্ষমতায় আসার পরও ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থার বাইরে – অর্থাৎ সাউথ ব্লকের রিসার্চ এন্ড এনালিসিস উইং-এর নির্দেশিত পথ ভিন্ন মোদির দিল্লী কোন নতুন পথরেখার উদ্ভব ঘটাতে পারে নি। এই প্রশ্নে ‘সবাইকে নিয়ে উন্নয়ন’ –নরেন্দ্র মোদীর এই বুলি নিছকই কথার কথা মাত্র, অকেজো। দিল্লী শেখ হাসিনাকে নিঃশর্ত সমর্থন দিয়ে যাওয়া তার নিজের স্বার্থের জন্যই জরুরী মনে করেছে। যার অর্থ প্রকারান্তরে প্রকারন্তরে বাংলাদেশে আইএস-এর উপস্থিতি নিশ্চিত করবার রাজনৈতিক পরিস্থিতি টিকিয়ে রাখা। এটা ভারতের জন্যও তেমন সুখের না হলেও শেষ পর্যনত ভারত এপর্যন্ত সে তাই করে চলেছে। এটা জানবার বুঝবার পরেও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দিল্লীর ভূমিকা বদলানোর আদৌ কোন প্রচেষ্টা নিয়েছে তার কোন প্রমাণ দেখা যায় না। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র দক্ষিণ এশিয়ার রাজনৈতিক মঞ্চে পেছনের বেঞ্চে তার গোয়েন্দা ও বিশ্লেষণের দলিল দস্তাবেজ নিয়ে বসে থেকেছে। দিল্লীর নীতিকে ভিন্ন ভাবে প্রভাবিত না করার পেছনে দ্বিতীয় আরেকটি কারণ থাকতে পারে। কারণ হচ্ছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ভূকৌশলগত ও অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার ক্ষেত্রে বেশ ছাড় বাংলাদেশ থেকে এই অবস্থাতেও পাচ্ছে। জ্বালানি উত্তোলনের জন্য ব্লক পাওয়া, ব্লু ওয়াটারের ওপর আধিপত্য কায়েমের প্রক্রিয়া হিসাবে বঙ্গোপসাগরে বাংলাদেশ নৌ বাহিনীর সঙ্গে সামরিক সম্পর্ক বৃদ্ধি, মনসান্তো-সিঞ্জেন্টার স্বার্থে বাংলাদেশের কৃষিতে বিকৃত বীজ বা জিএমও প্রবর্তন, ইত্যাদি। এ সকল কারনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র শেখ হাসিনাকে ক্ষমতায় রাখার সুবিধার দিকটাকেও বিবেচনার মধ্যে রেখে থাকতে পারে। দুই বলাবাহুল্য জেমস ক্ল্যাপারের প্রতিবেদন ভারতীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা ভালভাবে নেয় নি। তার প্রমান তাদের ওয়েবসাইট হিসাবে পরিচিত সাউথ এশিয়া এনালিসিস গ্রুপে প্রকাশিত ভাস্কর রায়ের লেখা থেকেই স্পষ্ট। ক্ল্যাপারের প্রতিবেদন ছাপা হবার এক সপ্তাহের মধ্যেই ১৬ জুলাই তারিখে ভাস্কর রায় লিখলেন, বাংলাদেশ সংক্রান্ত মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদন ‘প্রশ্নাত্মক’, কোশ্চেনেবল। কেন? তাঁর উদ্ধৃতি: During this period when the BNP-JEI alliance ran the country, Indian insurgent groups like the ULFA, NSCN(I/M) and others were given sanctuary in Bangladesh and actively assisted in procuring arms, ammunition and communication equipment which were smuggled into India’s North-East for waging war against the state. Bangladeshi intelligence organizations like the DGFI and NSI were assisting them. In fact, ULFA commander Paresh Barua and his family lived openly in Dhaka. ( দেখুন, Bangladesh Politics & US Intel’s Questionable Position) পুরানা যুক্তি। বিএনপি-জামাত আঁতাতের সরকারের সময় উলফা, এনএসসিএন সহ অন্যান্য বিদ্রোহী গ্রুপ বাংলাদেশে নির্ভয়ে বসবাসের সুযোগ পেয়েছিল। তারা বাংলাদেশের ডিজিএফআই এবং এনএস আই-এর সহযোগিতায় বিদেশ থেকে অস্ত্রশস্ত্র উত্তর পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলোতে নিয়ে আসতে পেরেছিলো। ইত্যাদি। অতএব শেখ হাসিনাকেই সমর্থন করে যেতে হবে। বলাবাহুল্য বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর বিরুদ্ধে তার দমন পীড়নের নীতিকেও। যদি বিএনপি জামাত এতো অপরাধ করে থাকে তাহলে তাদের দমন করাই দিল্লীর নীতি। সেই ক্ষেত্রে ভারতীয় গোয়েন্দারা বাংলাদেশের ভেতরে অপারেট করতেও দ্বিধা করেনি। গুম হয়ে যাওয়া বিএনপির নেতা সালাহ উদ্দীন আহমেদকে সীমান্তের ওপারে ভারতে পাওয়া ভারতীয় গোয়েন্দাদের জন্য একটি স্কান্ডাল হয়ে আছে। কিন্তু বিএনপি-জামাতের বিরুদ্ধে মার্কিন গোয়েন্দা প্রতিবেদনের বিপরীতে তোলা অভিযোগ পুরানা। এগুলো পুরানা তথ্য। ঠিক আছে, কুকর্মের শাস্তি জামায়াত-বিএনপি পেয়েছে, তারা ক্ষমতায় নাই। তাহলে উচিত হচ্ছে সামগ্রিক ভাবে বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে ভাবা। দক্ষিণ এশিয়ার নিরাপত্তার প্রশ্ন বিচক্ষণতা ও দূরদর্শিতা্র সঙ্গে বিচার করা। কিন্তু দিল্লী ও ভারতীয় গোয়েন্দারা শেখ হাসিনার সরকারের প্রতি যে নির্বিচার সমর্থন দিয়ে এসেছে সেটা আত্মঘাতী নীতি বলা যায়। কারণ এর ফল হচ্ছে বাংলাদেশের জনগণের সঙ্গে দিল্লীর বিরোধিতা তীব্র করা। বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার বদল ঘটেছে, ইতোমধ্যে বিশ্ব পরিস্থিতিও বদলে গিয়েছে। আল কায়েদার পরে আইসিস এসেছে। যুদ্ধের চরিত্র বদলে গিয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইউরোপের অর্থনৈতিক সংকট আরও দৃশ্যমান হয়েছে। কিন্তু ভারতীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা পুরানা কাসুন্দি ঘেঁটে নতুন বাস্তবতা ও সমস্যাকে আড়াল করেছে বারবার। যার মূল্য হলি আর্টিসানে দিতে হয়েছে। ভবিষ্যতে আর কি ঘটতে যাচ্ছে আমরা জানি না। বাংলাদেশের শিক্ষিত এলিট শ্রেণির ছেলেরা সিরিয়ায় গিয়ে আইসিসে যোগ দিচ্ছে। তারা গুলশানে ডিপ্লোমেটিক জোনের গহিনে হলি আর্টিসানে সফল অপারেশান চালিয়ে গর্বের সঙ্গে ভিডিও প্রচার করছে। চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতাকে নির্মূল করে এবং গণতন্ত্রের ছিঁটেফোঁটার কোন অস্তিত্ব না রেখে বিরোধী দলের বিরুদ্ধে ক্রমাগত দমন পীড়ন চালিয়ে গেলে যে নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি হয়, সেই শূন্যতার মধ্যে যা হবার তাই হয়েছে। নিরাপত্তা শূন্যতা তৈরি হবার প্রধান কারণ শেখ হাসিনার গণ-বিচ্ছিন্নতা। যেমন, এককথায় বললে, জনগণ শেখ হাসিনাকে ক্ষমতা রেখেই আইএস পরিস্থিতি মোকাবিলা দেখতে চায় কীনা। এ নিয়ে জনগণ ঠিক কি ভাবছে তা নিয়ে ভাবার দরকার আছে। এনিয়েও সন্দেহ করা যায়। জনগণ কী আস্থা রাখে যে হাসিনা আন্তরিকভাবে ভাবে বর্তমান বিপজ্জনক পরিস্থিতি সামাল দিতে পারবেন? তা করবে পারবে? জবাব হল, না। আর্টিজানে হামলার সময় থেকে প্রতিটা ঘটনায় জনগণ সন্দেহ করছে যে সরকার বুঝি কিছু লুকাচ্ছে, হয়তোবা এর পেছনে সরকারেই হাত রয়েছে। কীনা। প্রকৃত অপরাধীকে পরিচ্ছন্ন তদন্তে সনাক্ত করার চেয়ে চোখ বন্ধ করে বিএনপি-জামাত এটা করেছে বলে আর্টিজানের ঘটনাকে নিজের ক্ষমতা টিকানোর পক্ষে ব্যবহার করায় সরকারের প্রতি সন্দেহ আরও বৃদ্ধি করেছে। করবে কিনা? জনগণের এই প্রবল সন্দেহ শেখ হাসিনার পক্ষে মোকাবিলা করা এখন প্রায় অসম্ভব। তাঁকে সামনে রেখে পরিস্থিত মোকাবিলার নীতি ও কৌশল গ্রহণের ক্ষেত্রে জাতীয় ঐক্যমত গড়ে তোলাও কঠিন। অথচ এসময় দরকার ছিল জনগণের উৎকন্ঠা ও উদ্বেগকে যথাযথ মূল্য দিয়ে জনগণকে নিয়ে পরিস্থিতির মোকাবিলা। তবে ভারতীয় গোয়েন্দা ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকদের উৎকন্ঠার জায়গাগুলো বোঝা কঠিন নয়। যা একই ভাবে, বলা বাহুল্য দিল্লীরও উৎকন্ঠা বটে। বাংলাদেশকে তা আমলে নিতে হবে। বাংলাদেশ তা আমলে নিয়েছেও বটে। অভিযোগ মূলত ভারতের বিদ্রোহী দলগুলোর বিরুদ্ধে। ভারতের ইনসারজেন্সির সমস্যা ভারতের নিজের আভ্যন্তরীন সংকট, কিন্তু তার মাশুল দিতে হচ্ছে বাংলাদেশকে। তবে বাংলাদেশের ভূখণ্ড থেকে ভারতের বিরুদ্ধে কোন সশস্ত্র হামলা পরিচালিত হয়েছে তার কোন প্রমাণ আজ অবধি দিল্লী দিতে পারে নি। প্রমাণের দরকারে বিভিন্ন সময় কথিত উলফার ঘাঁটি আবিষ্কার করতে হয়েছে তাদের। সেখানে অস্ত্রশস্ত্র পাওয়া গিয়েছে দাবি করা হয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশের সীমান্তের ভেতর থেকে ভারতের বিরুদ্ধে যুদ্ধ পরিচালিত হয়েছে তার কোন প্রমাণ নাই। তার মানে বাংলাদেশ আন্তর্জাতিক বিধি বিধান লংঘন করেছে সেই প্রকার কোন অভিযোগ দিল্লী আন্তর্জাতিক কোন মঞ্চে হাজির করেছে বলে জানা নাই। বাংলাদেশ পাকিস্তানের বিরুদ্ধে লড়ে রক্তাক্ত মুক্তিযুদ্ধের মধ্য দিয়ে স্বাধীন হয়েছে। তাহলে কাশ্মিরসহ ভারতের দক্ষিণ পূর্বাঞ্চলের জনগণের স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রতি বাংলাদেশের জনগণের দুর্বলতা এবং সমর্থন থাকা অন্যায় কিছু নয়। যার কারণে স্বাধীনতাকামী বিদ্রোহীরা বাংলাদেশে থেকেছে। তারা বাংলাদেশে আশ্রয় পেয়েছে। অথচ ভারত তার আভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের রাজনৈতিক সমাধানে ব্যর্থ হয়ে বাংলাদেশকে ক্রমাগত দোষারোপ করেছে, যা মেনে নেবার কোন যুক্তি নাই। তবে এই বিতর্কগুলো আমাদের বর্তমান পরিস্থিতির বিচারে আপাতত এখন দূরবর্তী প্রসঙ্গ। এটা মিটে গিয়েছে বলা যাবে না, তবে কিভাবে আগামি দিনে প্রত্যাবর্তন করবে তা আমরা জানি না। ভাস্কর রায় ও ভারতের অপরাপর নিরাপত্তা বিশ্লেষকের লেখা পড়লে স্পষ্টই বোঝা যায় ভারতীয় গোয়েন্দাদের দূরদৃষ্টির অভাব খুবই প্রকট। ভাস্কর রায় তার লেখার কোথাও জেমস ক্ল্যাপারের বিশ্লেষণ কিম্বা বাংলাদেশে নিরাপত্তা সংক্রান্ত সম্পর্কে ভবিষ্যৎ দূরদৃষ্টির বিপরীতে কিছুই বলতে পারলেন না। ক্ল্যাপারের মূল যুক্তি ছিল খুবই সোজা। শেখ হাসিনা বিরোধী রাজনৈতিক দল –অর্থাৎ তার প্রতিপক্ষের বিরুদ্ধে যদি দমন পীড়ন অব্যাহত রাখে তাহলে আন্তর্জাতিক টেররিস্টগ্রুপগুলো বাংলাদেশে হাজির হয়ে যাবে। তাদের উপস্থিতির বিস্তৃত ঘটবে। ভাস্কর রায়ের বক্তব্য শেষ পর্যন্ত শেখ হাসিনা ও দলীয় কর্মকর্তাদের মতোই। আইএস মানে বাংলাদেশে জে এম বি, হুজি, আনসারুল্লাহ বাংলা টিম আর এদের মদদ দাতা বিএনপি-জামাত – অতএব সন্ত্রাস দমন করতে হলে বিএনপি-জামাত দমন করতে হবে। ভারতে নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও গোয়েন্দাদের চিন্তার দৌড় সম্পর্কে এখান থেকে আমরা কিছুটা ধারণা করতে পারি। তিন কিন্তু, আবারো বলি, গুলশানের ঘটনা মার্কিন গোয়েন্দাদের অনুমানই সত্য প্রমাণ করেছে এবং ভারতীয় নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও গোয়েন্দাদের পরিণত করেছে বেকুবে। কিন্তু ভারতের নিরাপত্তা বিশ্লেষক ও গোয়েন্দাদের বেকুব ভাববার কোন কারন নাই, কিম্বা মার্কিন গোয়েন্দা বিশ্লেষকদের মহা বুদ্ধিমান গণ্য করাও অর্থহীন। ক্ল্যাপার যা বলেছেন তা একদমই কাণ্ডজ্ঞান থেকে বলা, তার বক্তব্যের পক্ষে কোন কংক্রিট তথ্য প্রমাণ তিনি দেন নি। এতে অবশ্য আমাদের লাভ ক্ষতির কিছুই নাই। তবে প্রশ্ন হোল দিল্লী আন্তর্জাতিক টেররিস্ট গ্রুপের অস্তিত্ব অস্বীকার করতে চায় কেন? আর সে কারনে শেখ হাসিনাও। বিভিন্ন দিক থেকে বিষয়টির বিবেচনা দরকার। তবে এটা বোঝা যায়, বাংলাদেশে আইএস, আল্ কায়েদার উপস্থিতি স্বীকার করার অর্থ আদতে দক্ষণ এশিয়ায় আইএস, আল কায়েদা বা এই ধরণের সংগঠনের উপস্থিতি স্বীকার করে নেওয়া। সমস্যার আন্তর্জাতিক চরিত্র স্বীকার করে নিলে এটা শুধু কোন রাষ্ট্রের আভ্যন্তরীণ বিষয় বলে দাবি করা কঠিন হয়ে পড়ে। আন্তর্জাতিক সমস্যার সমাধানের জন্য আন্তর্জাতিক ভূমিকার কথা ওঠে। দিল্লী সেটা চায় না। বাংলাদেশের সন্ত্রাস দমনের বিষয়টি দিল্লী তার নিজের অধীনস্থ বিষয় হিসাবেই মীমাংসা করতে চায়। আন্তর্জাতিক সমস্যাকে দিল্লী বাংলাদেশ ও ভারতের দ্বিপাক্ষিক সমস্যা হিসাবে সংকীর্ণ করে রাখার সুবিধা বাংলাদেশের পুলিশ, প্রশাসন, সেনাবাহিনী, গোয়েন্দা কার্যক্রম সব কিছুর ওপর দিল্লীর আধিপত্য বহাল রাখা। দিল্লী বাংলাদেশকে তার একটি উপনিবেশের অধিক কিছু গণ্য করে না। বাংলাদেশের সমস্যার সমাধান দিল্লীরই এখতিয়ার। এই ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বা ইউরোপের হস্তক্ষেপ দিল্লী চায় না। মুশকিল হচ্ছে দিল্লী মোটেও সমস্যার সমাধান নয়, সমস্যার কারণ। দ্বিতীয়ত সীমান্তে হত্যা, পানি না দেওয়া, জবরদস্তি করিডোর আদায় করে নেওয়া এবং শেখ হাসিনাকে নিঃশর্তে সমর্থন করে যাওয়া ইত্যাদি নানান কারণে বাংলাদেশে একটি প্রবল দিল্লী বিরোধী মনোভাব তৈরি হয়েছে, দিল্লীর পক্ষে যার মোকাবেলা এখন অসম্ভবই বলতে হবে। এর পাশাপাশি প্রবল হিন্দুত্ববাদী রাজনীতির উত্থান ও মোদীর ক্ষমতারোহন বাংলাদেশের জনগণের জন্য গভীর উদ্বেগের কারণ। শেখ হাসিনার দমন পীড়ন দিয়ে জনগণের উদ্বেগ ও উৎকন্ঠার নিরসন এখন একদমই অসম্ভব। হলি আর্টিসানের ঘটনা বিপুল সংখ্যক তরুণকে রাজনৈতিক পথ ও পন্থায় উজ্জীবিত করবে তা মোকাবিলার ক্ষমতা ও বিচক্ষণতা দিল্লীর রয়েছে এটা বিশ্বাস করা এখন কঠিন। দিল্লীর বাংলাদেশ নীতির কারণে বাংলাদেশের রাজনৈতিক ও নিরাপত্তা পরিস্থিতি খুবই বিপজ্জনক প্রান্তে এসে ঠেকেছে। এর মূল্য দিল্লীকেও আজ হোক কি কাল হোক, দিতে হবে। অবস্থা এখনই এমন হয়েছে যে হাসিনার প্রবল আগ্রহ ভারতের সামরিক-গোয়েন্দা সংস্থার সদস্য ও কর্মকর্তাদের ঘাড়ে ভর করেই বাংলাদেশ রাষ্ট্রের দায় পালন, অর্থাৎ রাষ্ট্রীয় নিরাপত্তার কাজটা করা। আর ভারত একবার লোভে পড়ে প্রায় রাজি হয়ে যাচ্ছিল বটে, তবে আবার পরক্ষণেই হুঁশ হওয়ায় মনে পড়ে যাচ্ছে যে বাংলাদেশ ভুখণ্ডে জঙ্গীদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ অনেক গভীর। এই দোনামোনার প্রকাশ আমরা দেখেছি ভারতীয় বোমা বিশেষজ্ঞ আসা না আসার খবরে। খবরটা এসেই আপনার মিলিয়ে গেল। বাংলাদেশে রাজনৈতিক বিভাজন, সহিংসতা্র বিস্তৃতি ও রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেবার পেছনে দিল্লীর মদদ, সমর্থন ও সক্রিয় অবস্থানই বাংলাদেশের বর্তমান সন্ত্রাস ও সহিংসতার প্রধান কারন। নিরাপত্তা পরিস্থিতির সংকট আন্তর্জাতিক রূপ পরিগ্রহণ করবার ক্ষেত্রে এটাই মূল কারণ। বাংলাদেশ ও ভারতের শান্তিপ্রিয় ও গণতান্ত্রিক জনগণকে এই সত্য উপলব্ধি করতে হবে। আল কায়েদা, আইসিস ও অন্যান্য সংগঠনের জন্য বাংলাদেশের পরিস্থিতি খুবই উর্বর ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। ভারতের জনগণকে এই ক্ষেত্রে বিশেষ ভাবে বুঝতে হবে নিজেদের ভূমিকা পর্যালোচনা না করে ক্রমাগত ইসলাম ও বাংলাদেশীদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষের চর্চা আগুনে ঘি দেওয়ার অধিক কিছু করবে না। এই সময় দরকার চিন্তার পরিচ্ছন্নতা ও দূরদৃষ্টি। দরকার পরস্পরকে বোঝা ও জনগণের পর্যায়ে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলোকে চিহ্নিত করা। যদি ক্ল্যাপারের যুক্তি মানি তাহলে দিল্লীর ভূমিকাই প্রকারান্তরে বাংলাদেশে আল কায়েদা, আইএস জাতীয় সংগঠনের উপস্থিতি ও সক্রিয়তা অনিবার্য করে তুলেছে। দিল্লী বাংলাদেশের পরিস্থিতিকে তার নিজের স্বার্থে আরও জটিল করে তুলবে নাকি দক্ষিণ এশিয়ায় গণতন্ত্র ও শান্তির স্বার্থে বিচক্ষণ ভূমিকা গ্রহণ করবে সেটাই এখন দেখার বিষয়। এতোটুকুই শুধু বলা যায় প্রতিবেশীর চালে আগুন লাগলে নিজের ঘরের চালে আগুন ধরা শুধু সময়ের ব্যাপার মাত্র। কিন্তু দিল্লীকে কে বোঝাবে? পাঠক মন্তব্য Saiful islam, Kuwait, 08 Jul,2016 05:33pm All right. India বাংলাদেশের জন্য এখন বিপদ। তবে তারা যতটুকু উপকৃত হতে পেরেচে তার চেয়ে বেশী ক্ষতি হবে। আমরা জাতে বাঈালী । যাকে দরি তার শেষ কোথায় দেখে নি। Hindi বুজলিনা যখন বুজবি তখন কিছু করার থাকবে না । সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: আইএস এসেছে (!), আইএস আসে নাই (?) Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com আইএস এসেছে (!), আইএস আসে নাই (?) 31 October 2015, Saturday সাধারণত আমি লেখা শেষ করার পর লেখার শিরোনাম দিয়ে থাকি। কিন্তু আজ ব্যতিক্রম করেছি। আগে শিরোনাম লিখলাম। উদ্ধৃতি চিহ্নের মধ্যে একবার বিস্ময় চিহ্ন আর আরেকবার প্রশ্নচিহ্ন দেয়ায় পাঠকের একটু মিস্টেরিয়াস মনে হতে পারে। আসলে রহস্যের কিছু নাই। শেখ হাসিনার সরকার এতদিন আমাদের বুঝিয়েছিল, বাংলাদেশ ইসলামী সন্ত্রাসীতে ভরে গিয়েছে। তার সরকারের আমলে কোনো বিরোধী দল নাই। যারা তার সরকারের বিরোধী, এরা ইসলামী সন্ত্রাসী। আর তাই তিনি বিরোধী দল দমন করছেন না, ইসলামী সন্ত্রাসী দমন করছেন। কারণ, বিএনপি-জামায়াতে ইসলামীর ছত্রছায়ায় বাংলাদেশে ইসলামী সন্ত্রাস চর্চা হয়েছে, দল বা জোট হিসেবে তারা যেমন সন্ত্রাসীদের সঙ্গে যুক্ত ছিল, তেমনি তাদের নেতাকর্মীরা ইসলামী জঙ্গিদের সঙ্গে সরাসরি কাজ করেছে। সেটা প্রমাণের জন্য নেতাকর্মীদের ধরপাকড় চলেছে, জেল-জুলুম হয়েছে, তারা যে জড়িত ছিল, রিমান্ডে নিয়ে গিয়ে তাদের কাছ থেকে এর জবানবন্দি নেয়া হয়েছে। এতে আমাদের মোটামুটি কনভিন্সড করেই ফেলা হয়েছিল যে, আসলেই বিএনপি-জামায়াতে ইসলামী জঙ্গিদের একটি জোট। এদের পুরোপুরি নির্মূল করাই এখন কর্তব্য। মুজিবকন্যা শক্ত হাতে সেই কাজ করেছেন। প্রতিপক্ষ বিরোধী রাজনৈতিক দলকে নির্মূল করলে সারা দেশের জন্য তার পরিণতি কী হতে পারে, তার আগপাছ আমরা ভাবিনি। বিএনপি কার্যত একটি অক্ষম দলে পরিণত হয়েছে। শেখ হাসিনার ক্ষমতা চ্যালেঞ্জ করবার মতো কোনো শক্তি আর অবশিষ্ট নাই। জেল-জুলুম, দমনপীড়ন ছাড়াও আইনবহির্ভূতভাবে হত্যা, গুম ও খুন, পুলিশি হেফাজতে হত্যা, নির্যাতন করে রাজনৈতিক কর্মীদের চিরজীবনের জন্য পঙ্গু করে দেয়া- ক্ষমতাসীনরা ক্রমাগত তাই করেছে। এর জন্য তারা হাততালি পেয়েছে। কারণ আমরা কনভিন্সড যে, বিএনপি-জামায়াত-ইসলামপন্থীদের জোট একান্তই একটি সন্ত্রাসী জোট। তাদের নির্মূল করার ওপর বাংলাদেশের সমাজ রাজনীতিকে জঙ্গিমুক্ত করা নির্ভর করে। শেখ হাসিনা শক্ত হাতে এই ভালো কাজটি করেছেন। তাকে অবশ্যই প্রশংসা করতে হবে। এই অবিশ্বাস্য দমনপীড়নের মুখে খালেদা জিয়া অসহায় হয়ে এখন চিকিৎসার জন্য বিলাতে। এতে আমরা পুলকিত। কারণ অনুমান, তিনি আর ফিরে আসছেন না। হতে পারে। আবার নাও হতে পারে। হয়তো দেখা যাবে বিরোধী রাজনৈতিক দল নির্মূল করে দেয়ার কারণে যে রাজনৈতিক বাফার- অর্থাৎ সরকার ও বিরোধী এ দুইয়ের মধ্যবর্তী একটি রাজনৈতিক ক্ষেত্র বাংলাদেশে বহাল ছিল, সেটা দিনকে দিন একেবারে নাই হচ্ছে, যা আর প্রায় থাকবে না। এর ফলে শেখ হাসিনা কিছু সময় খালি মাঠ পাবেন বটে, তবে অচিরেই তাকে আসল জঙ্গিদের মোকাবেলা করতে হবে। তাদের হুজি, জেএমবি, আনসারুল্লাহ বাঙলা টিম বানিয়ে খুব একটা কাজ হবে না। ইসলামী জঙ্গি আসলে কী জিনিস সেটা মধ্যপ্রাচ্যের যুদ্ধ থেকে বুঝতে হবে। তারা জর্দার কৌটা আর ঘরে বানানো বোমা নিয়ে আসবে না। জঙ্গি মানে যোদ্ধা। ফলে তারা যোদ্ধার বেশেই আসবে। অস্ত্রশস্ত্র কোথায় কীভাবে আসবে, সেটা বোঝার মতো বুদ্ধিজ্ঞান যদি মাথা গরম বেকুব মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর বুদ্ধু ইউরোপের না হয়ে থাকে তো সেখানে শেখ হাসিনা কিংবা মোদি কোন ছাড়! মধ্যপ্রাচ্যে কোথা থেকে কীভাবে অস্ত্রশস্ত্র হাজির হয়ে যাচ্ছে, সেসব তথ্যভিত্তিক বিশ্লেষণ না পড়লে এটা বোঝা যাবে না। আজকাল দেখছি টেলিভিশনে বিস্তর নিরাপত্তা বিশ্লেষক হাজির হচ্ছেন। এদের কথাবার্তা, সে এক বিনোদন বটে! তবে সার কথাটা হচ্ছে, আমরা ঘৃণা করি আর যাই করি, বাংলাদেশে যদি ইসলামী যোদ্ধারা এসে যায় তাহলে শেখ হাসিনা কি তার র?্যাব আর পুলিশ দিয়ে এদের মোকাবেলা করতে পারবেন? সন্দেহ রাখার যথেষ্ট কারণ আছে। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী দিয়েও কি খুব বেশি কিছু করা সম্ভব? সেনাবাহিনী নিশ্চয়ই জেনে থাকবে যোদ্ধা কী জিনিস। তারপরও আমি মনে করি, বাংলাদেশে বিচক্ষণ সেনা ও মানুষের অভাব নাই। এমন সৈনিকরাও আছেন যারা আন্তর্জাতিক বাস্তবতায় রাজনীতি, রাষ্ট্র, সার্বভৌমত্ব, যুদ্ধবিগ্রহের তাত্ত্বিক ও ব্যবহারিক মানে বোঝেন। সেই রাখালের গল্প তো আমাদের মনে আছে, যে বাঘ এসেছে বাঘ এসেছে বলে চিৎকার করে গ্রামের মানুষ জড়ো করত। তাকে বাঁচানোর জন্য গ্রামের মানুষ ছুটে আসত। রাখাল গ্রামের মানুষের সঙ্গে ভালো একটি তামাশা করেছে বলে হো হো হো করে হাসত। কিন্তু একদা ঠিকই বাঘ এসে গেলেন। তামাশার বাঘ নয়, বাস্তবের ব্যাঘ্র। বাঘ ব্যাটাকে তখন আর মামা ডেকে কোনো লাভ হল না। রাখাল বাঘ বাঘ বলে চিৎকার করল। হা হা হা। গ্রামের মানুষ ভাবল তারা আর রাখালের মশকরার ফাঁদে পা দেবে না। বাঘ রাখালকে খেয়ে ফেলল। এই গল্পের নীতিশিক্ষা হল, সিরিয়াস ব্যাপার নিয়ে মশকরা করিও না। না না না, কক্ষণোই করিবে না। সাময়িক রাজনৈতিক ফায়দা আদায় হলেও না। এই নীতিটা রাখালের জন্য। কিন্তু গল্পের বাকি অংশটা বলা হয় না। সেই অংশ গ্রামের মানুষদের জন্য। সেটা কী? সেটা হল বাঘ রাখালকে আনন্দের সঙ্গে আহার করল। এরপর তার গ্রামের ঢোকার পালা। ঢুকল। এবং সুযোগ মতো আস্তে আস্তে গ্রামের লোকজন তার আহার্যে পরিণত হল। তারা ভুলে গিয়েছিল যে গ্রামটি যখন বনের পাশে, তাহলে বাঘ এলে গ্রামে হামলা করতেই পারে। রাখালের তামাশার শাস্তি দিতে গিয়ে দল বেঁধে যেখানে রাখালকে উদ্ধারের দরকার ছিল, সেটা তারা করল না। রাখালকে তামাশার শাস্তি দিতে গিয়ে নিজেরাই বাঘের আহার হয়ে গেল। সেই গ্রাম আর নাই। গল্পের এই শেষটুকু বলারও কেউ আর অবশিষ্ট নাই। শেষের গল্প বলার জন্য তখন কবি-সাহিত্যিকদের কিছুটা কল্পনা, কিছুটা কাণ্ডজ্ঞান, কিছুটা উপদেশমূলক বাণী দেয়ার ডাক পড়ে। আমি সেই দায়টা এখন পালন করলাম। আমরা যেন ভুলে না যাই আফগানিস্তান আমাদের পাশেই, ভুলে যেন না যাই মধ্যপ্রাচ্যও আমাদের অতি নিকটে। এটাও যেন ভুলে না যাই, ষোল কোটি মানুষের এ দেশের অধিকাংশই ইসলাম ধর্মাবলম্বী। জ্বি। ভুলে যেন না যাই, রাজনৈতিক অদূরদর্শিতা ও আÍঘাতী ভুল এবং ইসলামী সন্ত্রাসীর অজুহাত তুলে নিপীড়ন করে নিজের দানব ক্ষমতার পক্ষে ন্যায্যতা জোগাড়ের চেষ্টার কারণে ঘরে ঘরে ইসলামী জঙ্গি তৈরি হতে পারে। বাঙালি অসম্ভব ভীরু ও কাপুরুষ জাতি। সে কারণে এই ঘটনা এখনও ঘটেনি। কিন্তু শেখ হাসিনার জনকের ডাকে এই ভীরু ও কাপুরুষ বাঙালিই অস্ত্র ধরতে একদিনও সময় নেয়নি। বীর বাঙালি অস্ত্র ধর, বাংলাদেশ স্বাধীন কর বলে পাকিস্তানের প্রশিক্ষিত সেনাবাহিনীর বারোটা বাজিয়ে ছেড়েছিল। ইতিহাস থেকে শিক্ষা নিন, মানুষকে সেই প্রান্তসীমায় নেবেন না, যখন সে বোঝে তার আর কোনো উপায় নাই। শেখ হাসিনাকে আজ হোক কাল হোক সত্যিকারের ইসলামী জঙ্গিদের মোকাবেলা করতে হবে। আমরা যখন উদার রাজনীতির ক্ষেত্রকে ধ্বংস করি, কথা বলার দ্বার বন্ধ করে দেই, তখন যা অবশিষ্ট থাকে তা হচ্ছে বল প্রয়োগ। একথা আমি বহুবার আমার লেখায় বলেছি। দুই তাহলে আইএস এসেছে কথাটা মিস্টেরিয়াস লাগে কেন? কারণ আমরা বিশ্বাস করতে পারি না আসলেই এটা বাংলাদেশে ঘটছে। হয়তো সরকারের দাবি সঠিক, বিদেশীরা ভুল বলছে। কিন্তু অসম্ভব কি? এর আগে আমার ইতালিয়ান নাগরিক হত্যা ও তিনটি অর্থপূর্ণ ইঙ্গিত লেখায় আমি কার্যত অস্বীকার করেছিলাম যে বাংলাদেশে আইএস এসেছে। রিটা কার্ৎজ এবং তার ওয়েবসাইট সম্পর্কে তথ্যও দিয়েছিলাম। আমি এই সাইটসহ ইন্টারনেটে ওপেন সোর্স ইনফরমেশন যা পাওয়া যায় সবই মনোযোগের সঙ্গে নিরীক্ষণ করি। কারণ বাংলাদেশের ষোল কোটি মানুষের ভাগ্য ও ভবিষ্যতের সঙ্গে আমার- সর্বোপরি তরুণদের- ভাগ্য জড়িত। আমি অবাক হয়েছিলাম, এতকাল বাংলাদেশ দাবি করছিল যে, বাংলাদেশ ইসলামী সন্ত্রাসীতে ভরে গিয়েছে, অথচ এখন বলছে নাই। রিটা কার্ৎজ দাবি করছেন বাংলাদেশে আইএস এসেছে, আর ক্ষমতাসীন আওয়ামী জোট বলছে আইএস আসে নাই। মিস্ট্রি বা রহস্যটা এখানেই। ইতালিয়ান নাগরিক হত্যা ও তিনটি অর্থপূর্ণ ইঙ্গিত লেখাটিতে আমি বলেছিলাম, যে রাজনৈতিক দল, তাদের সমর্থক ও সরকার সারা বিশ্বে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গিবাদী রাষ্ট্র হিসেবে প্রমাণ করার জন্য সবসময়ই প্রাণান্ত, সিজার তাভেল্লার হত্যাকাণ্ডের ক্ষেত্রে কোনো ধরনের জঙ্গি সম্পৃক্ততা আছে তা প্রাণপণ এখন অস্বীকার করছে কেন? আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে কী এমন পরিবর্তন ঘটল যে নিজেদের থুতু এখন ক্ষমতাসীনরা নিজেরা গিলতে বাধ্য হচ্ছে? দ্বিতীয়ত, যেসব রাষ্ট্র মনে করে বাংলাদেশে জঙ্গি হামলার আশংকা রয়েছে, সেসব দেশ সেই আশংকার ভিত্তি বা যুক্তিসঙ্গত কারণ সম্পর্কে বাংলাদেশ সরকারকে কোনো তথ্য বা সূত্র দিয়ে সাহায্য করছে না। কিংবা করতে চাইছে না। এর কারণ কী? তারা কি মনে করে, রাখালের তামাশা যারা রাজনীতিতে প্রয়োগ করে, তাদের দিয়ে সত্যিকার ইসলামী যোদ্ধাদের মোকাবেলা সম্ভব নয়! যদি আসলেই আইএস বাংলাদেশে এসে গিয়ে থাকে, তাহলে শেখ হাসিনাকে দিয়ে তার মোকাবেলা হবে না। মধ্যপ্রাচ্যে হাতি-ঘোড়া গেল তল, মশা বলে কত জল! অর্থাৎ মধ্যপ্রাচ্যে ইসলামী জঙ্গিদের পাশ্চাত্য মোকাবেলা করতে ব্যর্থ হয়েছে, ইসলামপ্রধান ষোল কোটি দেশে যদি আইএস এসেই যায়, তাকে তারা মোকাবেলা করবে কীভাবে? শেখ হাসিনাকে দিয়ে? এটাই হচ্ছে মিস্ট্রি বা রহস্য। তাই বিদেশীরা রিটা কার্ৎজের তথ্যকেই মেনে নিচ্ছে, রিটা কার্ৎজের দাবির বাইরে আর নতুন কোনো তথ্য দেয়া তারা দরকারি মনে করে না। ইসলামিক স্টেটের বিদেশী হত্যায় সম্পৃক্ততার সূত্র কোনো সরকারি গোয়েন্দা সংস্থা নয়, একটি বিতর্কিত কিন্তু প্রাইভেট ইহুদি বা জায়নিস্ট গোয়েন্দা সংস্থা। বিদেশীরা এদের তথ্যকেই নির্ভরযোগ্য মনে করছে। তাই তারা বলছে, আইএস বাংলাদেশে এসেছে। একে বিস্ময় চিহ্নের মধ্যে রেখেছি। কারণ বিদেশীরা ভেবেছিল, শেখ হাসিনা ইসলামী জঙ্গিদের ঠেকাতে পারবেন। এখন তারা এ কী বলছেন! তারা বলছেন, বাংলাদেশে আইএস সক্রিয় কি-না নিশ্চিত নয়। আর সরকার বলছে, আইএস আসেনি। কিন্তু কিসের ভিত্তিতে বলছে- বিশ্বাসযোগ্য রেফারেন্স কই? তাই পাশে ব্র্যাকেটে প্রশ্নবোধক চিহ্ন রেখেছি। কারণ সরকারের কাছে এটা এখনও প্রশ্ন। কেন প্রশ্ন? কারণ, যতদূর জানি বিদেশীদের নিশ্চিত করতে হলে নিদেনপক্ষে ঘটনার ব্যালিস্টিক রিপোর্ট তাদের সঙ্গে শেয়ার করতে হবে। কী ধরনের গুলি, কী ধরনের পিস্তল ব্যবহার হয়েছে তার তথ্য। জানি না, দেয়া হয়েছে কি-না। মিডিয়ায় কোনো রেফারেন্স দেখিনি। সেটা গোয়েন্দারাই ভালো বলতে পারবেন। যদি দিয়ে থাকেন তাহলে বিদেশীরা আইএস নাই সে বিষয়ে নিশ্চিত হবে না কেন? যদি না দিয়ে থাকেন, তাই আইএস আসেনি এটা প্রশ্নবোধক হয়ে আছে। অন্তত এই লেখা অবধি। আইএসের রাজনীতির পক্ষ-বিপক্ষ নিয়েও মতামত থাকতে পারে। কিন্তু সেসব নিয়ে এই মুহূর্তে তর্ক করার চেয়েও আমাদের ভাবতে হবে সারা বাংলাদেশ নিয়ে। ভাবতে হবে ১৬ কোটি মানুষ নিয়ে। বাংলাদেশকে আমরা যুদ্ধক্ষেত্র বানাতে পারি না। বাংলাদেশকে রাজনীতিশূন্য করার বিরুদ্ধে আমাদের সবাইকে দাঁড়াতে হবে। এক অনিশ্চিত ও দীর্ঘস্থায়ী ভয়াবহ পরিস্থিতির দিকে যারা দেশকে ঠেলে দিচ্ছেন, আশা করি তারা হুঁশে আসবেন। এটা ঘটবার সুযোগ দেয়া হবে চরম আত্মঘাতী কাজ। ৩০ অক্টোবর ২০১৫, ১৫ কার্তিক ১৪২২/ শ্যামলী পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 13 Aug, 2016 ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম ফরহাদ মজহার farhadmazhar@hotmail.com ‘শাহাদাত বার্ষিকীতে সাধুসঙ্গ!’ 13 August 2016, Saturday আগস্ট মাসে শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবারে নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে ‘মৃত্যুবার্ষিকী’ হিসেবেই পালন করা হতো। আজকাল ‘শাহাদাত বার্ষিকী’ হিসেবে উদযাপন করা হচ্ছে। এটা নতুন। এবারের নতুন আরেকটি দিক হল ‘শাহাদাত বার্ষিকী’ উদযাপনের জন্য শিল্পকলা একাডেমি ‘সাধুসঙ্গ’ আয়োজন করেছে। এতকাল আওয়ামী লীগ আগস্ট মাসকে শোকের মাস হিসেবেই পালন করে এসেছে। ১৫ আগস্ট শেখ মুজিবুর রহমানের সপরিবার হত্যা নানা স্তরে বাংলাদেশের ঘটনাপ্রবাহের নির্ণায়ক হয়ে ওঠে। এতে ক্ষমতা থেকে ব্যক্তি হিসেবে তাকে অপসারণ করা সম্ভব হয়েছে; কিন্তু ইতিহাসের শেখ মুজিবকে মুজিবোত্তর বাংলাদেশের ইতিহাস থেকে মুছে ফেলা যায়নি। সেটা সম্ভবও নয়। অন্যদিকে ইতিহাসে শেখ মুজিবুর রহমানের ভূমিকার নির্মোহ পর্যালোচনা এখনও সম্ভব নয়। কারণ রাজনীতিকে আমরা আবেগের আতিশয্য থেকে মুক্তি দিতে পারি না, অন্যদিকে জাতীয় ব্যক্তিত্বকে দলীয় ব্যক্তিত্বে পরিণত করার ক্ষেত্রেও আমাদের জুড়ি নাই। আওয়ামী লীগ মেনে নেবে না; কিন্তু জিয়াউর রহমান সম্পর্কেও একই কথা বলা যায়। রাজনৈতিক ব্যক্তি হিসেবে দলীয় প্রচার-প্রপাগান্ডার বাইরে যত তাড়াতাড়ি আমরা তাদের নির্মোহ বিচারের অধীন করতে পারব, ততই তাদের জাতীয় তাৎপর্য স্পষ্ট হয়ে উঠবে। সেটা খুব সহজ কাজ নয়। জিয়াউর রহমানও নিহত হয়েছিলেন। তাকে বিএনপি ‘শহীদ’ মনে করে, ফলে তার নামের আগে শহীদ জিয়াউর রহমান বলতে তাদের অসুবিধা হয়নি। তবে নিহতদের নামের আগে ‘শহীদ’ জুড়ে দেয়ার চল সেক্যুলারদের হাতেই ঘটেছে। একুশের শহীদ সালাম-বরকত যেমন। তাদের স্মৃতিতে বানানো ‘শহীদ মিনার’ ইত্যাদি। বাঙালি জাতীয়তাবাদী ও ধর্মনিরপেক্ষওয়ালাদের কেন ধর্মীয় প্রতীকের প্রয়োজন হয়- সেটা রাজনীতি ও সংস্কৃতির সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক নিয়ে গবেষণার খুবই উর্বর জায়গা। একুশের শহীদদের উদাহরণ আছে বলে বিএনপি সেক্যুলার দল হয়েও জিয়াউর রহমানকে ‘শহীদ’ বলতে অসুবিধা বোধ করেনি। জিয়াউর রহমানকে তাই ‘শহীদ জিয়াউর রহমান’ বলার চল হয়েছে। কিন্তু শেখ মুজিবুর রহমানের ওপর এ ধর্মীয় খেতাব আরোপ কঠিন ছিল। বাঙালি জাতীয়তাবাদীরা ধর্মের সঙ্গে রাজনীতি মিশ্রণের প্রবল বিরোধিতা করে, ফলে তাদের পক্ষে শেখ মুজিবকে শহীদ মুজিব বলা আসলেই কঠিন। তবে গত কয়েক বছর ধরে দেখছি ১৫ আগস্টকে শেখ মুজিবুর রহমানের ‘শাহাদাত বার্ষিকী’ বলার চল বেড়েছে। তাকে ‘শহীদ’ বলার ক্ষেত্রে একমাত্র বাধা হচ্ছে তার নামের আগে ‘বঙ্গবন্ধু’ খেতাবটি। এতেই তিনি পরিচিত হয়ে উঠেছেন। তবে এ বছরই মনে হচ্ছে ১৫ আগস্টকে শাহাদাত বার্ষিকী হিসেবে উদযাপন করার সচেতন আওয়ামী প্রচেষ্টা দেখা যাচ্ছে। সংবাদপত্রে আগস্টের শুরু থেকে যেসব খবর পড়ছি, তাতে প্রায়ই ১৫ আগস্টকে মৃত্যুবার্ষিকী না বলে ‘শাহাদাত বার্ষিকী’ বলা হচ্ছে। এটা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ রূপান্তর। শুধু আওয়ামী লীগের নয়, বাংলাদেশের রাজনীতিরও বটে। মূলত ২০১৩ সালের পর থেকে বাংলাদেশের রাজনীতির যে গুণগত রূপান্তর শুরু হয়েছে, এটা তারই ধারাবাহিকতা মাত্র। এটা সেক্যুলার বা ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির ইসলামীকরণ কিনা সেটা পুরোপুরি বলার সময় আসেনি। তবে আওয়ামী রাজনীতির সঙ্গে ধর্মের সম্পর্ক বদলাচ্ছে, এটা পরিষ্কার। এটা অভিযোগ আকারে অবশ্য ইসলামবিদ্বেষী ব্লগার ও শাহবাগের সমর্থকরা অনেক আগেই আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করে বলে আসছিল। আওয়ামী লীগ ব্ল­গার হত্যার কোনো কূলকিনারা আজও করতে পারেনি, উল্টো তারা ধর্মপন্থীদের তোষণ করার নীতি গ্রহণ করেছে। তাদের এ অভিযোগ খুব মিথ্যা নয়; কিন্তু তাদের ঐতিহাসিক অজ্ঞতা হল আওয়ামী মুসলিম লীগ থেকে জন্ম নেয়া আওয়ামী লীগ ধর্ম তোষণ আজ করছে, ব্যাপারটা এমন নয়। সত্তর দশকে শেখ মুজিবুর রহমানকে বারবার বলতে হয়েছে, আওয়ামী লীগ ধর্মনিরপেক্ষতাকে রাজনৈতিক আদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে; কিন্তু তারা ধর্মবিদ্বেষী, কিংবা ইসলামবিদ্বেষী নয়। সত্তরের নির্বাচনে এ ইস্যুটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি ইস্যু ছিল। কোরআন সুন্নাহর বিরোধী কোনো আইন আওয়ামী লীগ সমর্থন করবে না, এ প্রতিশ্র“তি শেখ মুজিবকে যেমন দিতে হয়েছে, শেখ হাসিনাও নানা সময়ে বলেছেন। আওয়ামী লীগ সাধারণ মানুষ নিয়ে রাজনীতি করে, ফলে মুখে যতই লম্বাচওড়া কথা তারা বলুক, রাজনীতিতে ধর্মের ব্যবহারের ক্ষেত্রে আওয়ামী রাজনীতি সবসময়ই কুশলতার পরিচয় দিয়েছে। ‘লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ, নৌকার মালিক তুই আল্লাহ’- এটা জনপ্রিয় আওয়ামী স্লোগান। শাহবাগের সমর্থকরা ঠাণ্ডা মাথায় তাদের কৃতকর্মের বিচার করতে সক্ষম কিনা সেই সন্দেহ আমি করি। শাহবাগ শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণীকেন্দ্রিক আন্দোলন ছিল, তাতে সন্দেহ নাই। কিন্তু তা সত্ত্বেও বাংলাদেশের রাজনৈতিক বাস্তবতার প্রেক্ষাপটে শাহবাগের বিপুল ইতিবাচক সম্ভাবনা ছিল। যেমন, অগণতান্ত্রিক ও ফ্যাসিস্ট রাষ্ট্রব্যবস্থার মধ্যে বিপুল জনসমাগম সংগঠিত করতে পারা খুবই গুরুত্বপূর্ণ কাজ ছিল। এ সমাবেশের মধ্য দিয়ে গণতান্ত্রিক শক্তির নজির স্থাপন, একাত্তরের মানবতাবিরোধী অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করে ন্যায়বিচারের ঐতিহ্য কায়েম করা ইত্যাদির আরও বড় রূপান্তরের সম্ভাবনা তৈরি হয়েছিল। কিন্তু সেটা ঘটেনি। বোঝা গেল শহুরে মধ্যবিত্ত শ্রেণী ফ্যাসিবাদী রাষ্ট্রব্যবস্থাকে আরও নিখুঁত করে তুলতে পারে, কিন্তু রূপান্তরের কোনো পথ দেখাতে পারে না। এটা নতুন কোনো কথা নয়। শ্রমিক, কৃষক বা সাধারণ মানুষ যে আন্দোলনে জড়িত থাকে না, তার পরিণতি ভিন্ন কিছু হয় না। ২০১৩ সাল থেকে আওয়ামী লীগ নিজেকে আগের চেয়েও আরও অধিক তৎপরতার সঙ্গে ইসলামবিদ্বেষীদের কাছ থেকে দূরত্ব তৈরির চেষ্টা করছে। এর একটা কারণ ৫ মে শাপলা চত্বরে আলেম-ওলামাদের বিরুদ্ধে সরকারের আচরণে আওয়ামী লীগের যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠেছে, দলটি তা কাটিয়ে উঠতে চায়। এ ক্ষেত্রে আওয়ামী লীগ কিছুটা সফল হয়েছে বলতে হবে। এই তৎপরতার আরেকটি নিদর্শন হচ্ছে ১৫ অগাস্টকে শেখ মুজিবুর রহমানের ‘মৃত্যুবার্ষিকী’ হিসেবে পালন না করে একে ‘শাহাদাত বার্ষিকী’ হিসেবে পালন করা। দুই এই পরিপ্রেক্ষিতে কোনো একটি সংবাদে পড়লাম, শেখ মুজিবুর রহমানের ‘শাহাদাত বার্ষিকী’ উদযাপনের জন্য শিল্পকলা একাডেমি ‘সাধুসঙ্গ’ আয়োজন করেছে। খবরে এটা জেনে একটু হকচকিয়ে গেলাম। লালনপন্থী ফকিরদের জন্য ‘সাধুসঙ্গ’ খুবই গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান। একজন খেলাফতধারী লালনপন্থী ফকিরই শুধু তার আখড়ায় সাধুসঙ্গের আহ্বান জানাতে পারেন। তিনি তিরোধান করলে তার শিষ্যশাবকরা তার আখড়ায় একই তারিখে সেই অনুষ্ঠান সাধারণত চালিয়ে যান। যেমন গৌরপূর্ণিমায় (বা দোলপূর্ণিমায়) ছেঁউড়িয়ায় লালন প্রবর্তিত বিখ্যাত সাধুসঙ্গ। সাধু নিজে সাধুসঙ্গের দিন-তারিখ নির্ধারণ করার অধিকারী নন। সেটা করেন তার গুরু। অর্থাৎ গুরুর নির্দেশে বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে গুরুর হাতে খেলাফত নেয়া ভক্ত গুরুর নির্দেশে নিজের আখড়ায় সাধুদের নিয়ে যে সঙ্গ করেন তাকেই শুধু ‘সাধুসঙ্গ’ বলা হয়। সেখানে গুরু স্বয়ং হাজির থাকেন। শিষ্য তার সেবার ‘পারস’ ভক্তির থালা গুরুকেই নিবেদন করেন। মনে আছে, এর আগে লালন প্রেমিক তরুণরা চারুকলায় কয়েকটি সাধুসঙ্গ করেছিলেন। তারা বাউল ফকিরদের গান ভালোবাসেন, অনেকে আমার স্নেহভাজন এবং লালনপন্থী ফকিরদের সঙ্গে তারা আন্তরিকভাবে নিয়মিত ওঠাবসা করেন। এর ফলে অনেকের ধারণ হয়েছিল, বাউল ফকিরদের নিয়ে একসঙ্গে গান করলেই সেটা বুঝি সাধুসঙ্গ হয়। এটা ভুল ধারণা। সাধু বাউল ফকিরদের নিয়ে একসঙ্গে গানবাজনা করাকেই ‘সাধুসঙ্গ’ বলা হয় না, এটা বোঝা জরুরি। সাধুসঙ্গে লালন ও অন্যান্য সাধকের গান গাওয়া হয় বটে, তবে সাধুসঙ্গের মূল উদ্দেশ্য সঙ্গীত অনুষ্ঠান মোটেও নয়। তাই বাউলদের গানের অনুষ্ঠানকে ‘সাধুসঙ্গ’ বলা হলে বিভ্রান্তি তৈরি হয়। সাধু, বিশেষত নদিয়ার লালনপন্থী ফকিরদের জীবনচর্চার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠান হচ্ছে ‘সাধুসঙ্গ’। কে সাধুসঙ্গ আহ্বানের অধিকারী, সাধুসঙ্গের বিধিবিধান ও সেবা পদ্ধতি কী এবং তা পালনের শর্তগুলো পালিত হচ্ছে কিনা সেটা পর্যবেক্ষণের কারা অধিকারী ইত্যাদি নানান বিষয় রয়েছে, যা লালনপন্থী ফকিরদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ। সে কারণে ‘সাধুসঙ্গ’ ধারণাটির নির্বিচার যত্রতত্র ব্যবহার বাঞ্ছনীয় নয়। অজ্ঞতা উপেক্ষার শামিল এবং সেটা অবস্থা অনুসারে অপরাধের মধ্যেই পড়ে। শিল্পকলা একাডেমি এসব বিষয়ে সতর্ক থাকবে এটাই আমরা আশা করি। সংবাদপত্রের কর্মীদের কাছেও আশা যে, তারা বাউল গানের আসরকে বাউল গানের আসরই বলবেন, ‘সাধুসঙ্গ’ বলবেন না। দরকার কী? এতে তো গানের মহিমা ম্লান হবে না। এটা আশা করি বোঝাতে পেরেছি, শিল্পকলা একাডেমি কোনো সাধুর আখড়া নয়, যেখানে একজন আসনধারী ফকির আছেন যিনি গুরুর নির্দেশে বছরের একটি নির্দিষ্ট দিনে সাধুসঙ্গ আহ্বান করেন। শিল্পকলা একাডেমির কর্তৃপক্ষ কোনো সাধুসঙ্গ আহ্বান করতে পারে না, কারণ তারা এর অধিকারী নয়। ফলে খবরের কাগজওয়ালারা যদি ভুল বুঝে থাকেন সেটা তাদের সমস্যা, আশা করি শিল্পকলা একাডেমি এই ভুল করবে না। তারা শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকী উপলক্ষে লালনের গানের আসর বসিয়েছেন। এ ক্ষেত্রে একটি খবরে দেখছি বলা হয়েছে : ‘‘সবলোকে কয় লালন কী জাত সংসারে’, ‘তিন গর্ভে আছে রে এক ছেলে’, ‘তোমার মতো দয়াল রাসূল আর পাব না’, ‘জাত গেল জাত গেল বলে, ‘চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে’, ‘আমি অপার হয়ে বসে আছি’, ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’, ‘বাড়ির কাছে আরশিনগর’- লালনের ইত্যাদি অমিয় বাণীর সুধা কণ্ঠে তুলে নিয়ে শিল্পীরা শুধু সুরের আবেশই ছড়ালেন না, সাঁই ভক্তদের অবগাহন করালেন ভাবের জগতে। এমন চিত্রই ছিল জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকীর মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিন দিনব্যাপী বাউল গানের আসরের প্রথম দিনে। গতকাল সন্ধ্যায় শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় চিত্রশালা মিলনায়তনে শুরু হয় তিন দিনব্যাপী এই আয়োজন।” (দেখুন, বাংলাদেশ ‘লালন বন্দনায় মুখরিত শিল্পকলা’, প্রতিদিন, ১২ আগস্ট ২০১৬)। ‘জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর ৪১তম শাহাদাত বার্ষিকীর মাসব্যাপী কর্মসূচির অংশ হিসেবে তিন দিনের বাউল গানের আসর’, বাংলাদেশের রাজনীতির গুণগত পরিবর্তন বোঝার জন্য এই বাক্যটি বেশ ভালো একটি ইঙ্গিত। আমরা এখন শেখ মুজিবুর রহমানের শাহাদাত বার্ষিকীই শুধু উদযাপন করছি না, শিল্পকলা একাডেমিতে তিন দিন ধরে বাউল গানের আসরও বসাচ্ছি। সাংস্কৃতিক জগতের মধ্য দিয়ে আওয়ামী লীগ কীভাবে ইসলামী ভাবধারা আত্মস্থ করে নিতে চাইছে সেটা অনেকের কাছে ক্যারিকেচার মনে হলেও বাংলাদেশের রাজনীতি বোঝার জন্য খুবই ইন্টারেস্টিং ব্যাপার। তবে শিল্পকলা একাডেমি আশা করি জানে যে, ‘তিন গর্ভে আছে রে এক ছেলে’ কিংবা ‘চাঁদের গায়ে চাঁদ লেগেছে’ ইত্যাদি লালন ফকিরের গান নয়। তবে অনেক বাউল একে লালনের গান বলে গেয়ে থাকেন। তারা গাইতেই পারেন। শিল্পকলা একাডেমির দায়িত্ব হচ্ছে সঠিকভাবে এসব বিষয়ে গবেষণা করা। আজকাল নতুন একটি পরিভাষাও শুনছি। সেটা হচ্ছে ‘ভাবশিষ্য’। অনেক বাউল কিংবা লালনের গান গেয়ে থাকেন এমন অনেকে নিজেকে লালনের ‘ভাবশিষ্য’ বলে পরিচয় প্রকাশ করেন। তবে এটা স্পষ্ট থাকা দরকার যে, গুরু-শিষ্য পরম্পরা মেনে সাধন ভজনের যে ধারা, সেখানে ‘ভাবশিষ্য’ নামক কোনো বর্গ, ক্যাটাগরি বা পরিভাষা নাই। যারা লালনকে ভালোবাসেন, লালনের গান গেয়ে থাকেন কিংবা আনন্দের সঙ্গে শোনেন, তাদের জন্য কিছু কথা বলে রাখা দরকার। কোনো গুরু-গোঁসাইয়ের অধীন না হয়েও নিজেকে ‘ভাবশিষ্য’ বলা অর্থহীন। জানা দরকার লালনপন্থা বা নদিয়ার ভাবচর্চায় লালনের ‘ভাবশিষ্য’ বলে কিছু নাই। শিষ্য হতে হয় জীবন্ত গুরুর, তথাকথিত ‘ভাব’ নামক কোনো কিছুর নয়। গুরুশিষ্য সম্পর্ক জীবন্ত মানুষের সঙ্গে জীবন্ত মানুষের সম্পর্ক। এটা সম্পর্ক চর্চার বিষয়, ভাবের চর্চা নয়। এমনকি লালনের শিষ্য বলেও এখন কেউ নাই। কেউই এখন নিজেকে লালনের শিষ্য বলে দাবি করতে পারেন না। কারণ লালন যেমন গত হয়েছেন বা তিরোধান করেছেন, তেমনি যারা লালনের সরাসরি শিষ্য ছিলেন, তারাও সবাই তিরোধান করেছেন। এখন আমি বা আপনি চাইলেও আর লালনের শিষ্য হতে পারব না। লালনপন্থায় শিষ্য মানেই হচ্ছে আপনি আপনার সময়কালে গুরু-পরম্পরার বিধিবিধান মেনে কোনো না কোনো লালনপন্থী সাধককে গুরু বলে মেনে নিয়েছেন। আপনি সেই জীবিত গুরুর শিষ্য, মৃত লালনের নন। কোনো না কোনো জীবিত মানুষকেই গুরু বলে মেনে নিতে হবে এবং লালনের ঘরের চর্চা অনুযায়ী জীবিত গুরুর ভজনা করতে হবে। লালনের ভাবচর্চার দাবি যদি আপনি করেন তাহলে আপনাকে এই পথেই যেতে হবে। বাঁকা পথে হেঁটে লাভ নাই বা ফাঁকিবাজি করাও ঠিক নয়। আমাদের সিধা সরল থাকা দরকার। শিষ্য হওয়ার দরকার বোধ না করলে শিষ্য হবেন না। গুরু নাই, অথচ নিজেকে ‘ভাবশিষ্য’ বলার কী দরকার! গুরু ভজনা করা সম্ভব না হলে শিষ্য হবেন না। অসুবিধা কী? আপনি জীবিত কোনো মানুষের কাছে মাথা নোয়াবেন না, অথচ নিজেকে লালনের ‘ভাবশিষ্য’ বলবেন, সেটা হবে না। গায়ের জোরে বা গোয়ার্তুমি করে অবশ্য অনেক কিছু দাবি করতে পারেন, সেটা ভিন্ন তর্ক। শিল্পকলা একাডেমি লালনের গানের আসর বসাতে পারে; কিন্তু ‘সাধুসঙ্গ’ আহ্বানের অধিকারী তারা নয়, তাতে শিল্পকলা একাডেমির ক্ষতিবৃদ্ধি নাই। কিন্তু যদি আমরা বিভ্রান্তি তৈরি করি, তাহলে এতে ক্ষতি ছাড়া লাভ নাই। গুরুশিষ্য পরম্পরায় বাহিত হয়ে নদিয়ার ভাবচর্চার যে ধারা অব্যাহত রয়েছে তাকে আমরা খামাখা অপমান ও অস্বীকার করব কেন? আমরা যা না, সেটা হয়েছি বলে দাবি করার মধ্যে কোনো যুক্তি নাই। প্রশ্ন হচ্ছে, নদিয়ার ভাবচর্চার জন্য গুরু পরম্পরার বিধান মেনে গুরু ভজনা জরুরি কেন? এর প্রধান কারণ হচ্ছে, ভাষার প্রতি নদিয়ার দৃষ্টিভঙ্গি। নদিয়া মনে করে না ভাষার কোনো সুনির্দিষ্ট বা অবস্থা নির্বিশেষে আগে থাকতেই তৈরি কোনো স্থির অর্থ আছে। লালনের গানের আক্ষরিক অর্থ আছে, কিন্তু দেশ-কাল-পাত্র ভেদে সেই অর্থের হেরফের হতে পারে। তার মানে দু’জন শিষ্যের মধ্যেও অর্থের ভিন্নতা ঘটতে পারে, কিংবা একই গুরু তার দুই শিষ্যকে তাদের বোঝাবুঝির ক্ষমতা বুঝে দু’ভাবে অর্থ করতে পারেন। ভাষার এই অর্থোৎপত্তির সম্ভাবনা সাধকের কাছে বাধা হিসেবে নয় বরং নতুন পরিস্থিতিতে লালনের গান বা কালামকে নতুনভাবে বিবেচনা ও বিচারের সম্ভাবনাকেই জারি রাখে। কিন্তু এতে কি একই গানের নানান অর্থ তৈরির বিপদ সৃষ্টি হয় না? হ্যাঁ, হতে পারে। এই বিপদ ভাষার স্বভাবের মধ্যে নিহিত। ঠিক। কিন্তু অর্থ নির্ণয়ের অধিকারী শিষ্য নন, গুরু। শিষ্য চাইলেই গানের যে কোনো অর্থ করতে পারে না। অর্থের একটা ঐতিহ্য আছে, গুরুশিষ্য পরম্পরার মধ্য দিয়ে যা বিকশিত হয়। ফলে একদিকে ভাষার সম্ভাবনা জিইয়ে রাখা- বিশেষত আক্ষরিক অর্থের সীমা অতিক্রম করে যাওয়ার সম্ভাবনা জারি রাখা- অন্যদিকে গুরুশিষ্য পরম্পরার মধ্য দিয়ে যেমন ইচ্ছা অর্থ তৈরির স্বেচ্ছাচারিতা রোধ, এই দুইয়ের মধ্য দিয়ে নদিয়ার ভাবচর্চা বিকশিত হয়। এ কারণেই নদিয়ার ভাবচর্চা গুরু-শিষ্য সম্পর্ক ছাড়া চর্চা অসম্ভব। এটা লালন নিয়ে গবেষণা, কিংবা লালনের গান ভালোভাবে গাইবার ব্যাপার নয়। ভাষার চরিত্রের কথা মনে রাখলে, লালন পন্থায় ‘গুরু’ কথাটার অর্থ বোঝা যাবে না। তিনি প্রথাগত গুরু নন, বরং তিনি ভাষা ও ভাবের সম্বন্ধ সম্পর্কে ওয়াকিবহাল এবং তা নিয়মিত ও নিত্য আখড়ায় ও সাধুসঙ্গে চর্চা করেন। গুরু-শিষ্য সম্পর্ককে দেহ বা দেহবাদ দিয়ে বুঝতে চাইলে কিছুই বোঝা যাবে না। এই সম্পর্ক ভাষার সঙ্গে সম্পর্ক এবং জীবন্ত মানুষের মধ্যে ভাষাচর্চার সম্পর্কের সঙ্গে জড়িত। যা মৃত বই, শাস্ত্র, বা তত্ত্ব পড়ে বোঝা যায় না। বই নিজের ব্যাখ্যা নিজে করতে পারে না, তা কোনো না কোনো জীবন্ত মানুষকেই করতে হয়। একই সঙ্গে শিষ্যের ধারণক্ষমতা সম্পর্কেও গুরুর সজ্ঞান থাকার প্রশ্ন এ ক্ষেত্রে জড়িত রয়েছে। ভাষার প্রসঙ্গে এলাম কারণ ভাষা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ‘মৃত্যুবার্ষিকী’ থেকে ‘শাহাদাত বার্ষিকী’- এই পরিবর্তনকে তাই হালকাভাবে নেয়ার উপায় নাই। ভাষার এই রূপান্তর একই সঙ্গে বাংলাদেশের রাজনীতিরও গুণগত রূপান্তরের চিহ্ন নির্দেশ করে। এই কথাটুকুই আপাতত আগামী দিনের রাজনীতি অনুধাবনের জন্য বলে রাখলাম। উৎসঃ যুগান্তর পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 05 Nov, 2016 বাঘের ঘরে ছাগলের ছানা 22 Oct, 2016 গণতন্ত্র ও শিক্ষাব্যবস্থার সম্পর্ক 01 Oct, 2016 মূল্যায়ন নয়, ভালোবাসার তাগিদ থেকে লেখা 24 Sep, 2016 গণতন্ত্র ও বিপ্লব কথা দুটির মানে আসলে কী 20 Sep, 2016 নিজেদের দায়িত্ব 10 Sep, 2016 কোরবানি 27 Aug, 2016 হাতির ডিম 24 Aug, 2016 অন্যের আয়নায় দেখি নিজেকে 20 Aug, 2016 রামপাল বিদ্যুৎ প্রকল্প চাই না 07 Aug, 2016 ভারত-বাংলাদেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক বৃদ্ধিই জরুরি কাজ 06 Aug, 2016 মাইলসের প্রতি ফসিলসের বিরাগের কারণ কী? 24 Jul, 2016 আত্মপরিচয়ের রাজনীতির বিপদ 08 Jul, 2016 বাংলাদেশ জঙ্গিদের টার্গেট হয়ে যাওয়ার বিপদ কী ভারত নেবে 26 Jun, 2016 ঝড় আসছে, পুরনো প্রাসাদ ভেঙে পড়বে 25 Jun, 2016 রাজনীতির রোমান্টিক পর্বের অবসান 18 Jun, 2016 বদরুদ্দিন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 18 Jun, 2016 বদরুদ্দীন উমর ও বাংলাদেশের ‘হিন্দু’ প্রশ্ন 11 Jun, 2016 সংকট কি আদৌ ফৌজদারি? অথবা পুলিশি? 28 May, 2016 সত্যবাদীদের সমাজ ও রাজনীতি 11 May, 2016 ধর্মকে সমাজ থেকে কেটে বিচ্ছিন্ন করা যায় না 09 May, 2016 মানুষের ধর্ম বিশ্বাসকে অপমান করে তারা মুক্তচিন্তার মাস্তান হতে চায় 05 May, 2016 বিদেশী মোবাইল কোম্পানি কেন বায়োমেট্রিক ডাটাবেইজ বানাচ্ছে? 25 Jan, 2016 প্রধান বিচারপতির বক্তব্য ও বিতর্ক 17 Jan, 2016 ইচ্ছা করে কারওয়ান বাজার রাতভর জেগে থাকি 02 Jan, 2016 নতুন রাজনৈতিক দিশা চিহ্নিত করার বছর Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:বিশ্বে প্রথমবারের মতো এইডস থেকে মুক্তি পেলেন এক ব্যক্তি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য বিশ্বে প্রথমবারের মতো এইডস থেকে মুক্তি পেলেন এক ব্যক্তি 04 Oct, 2016 দীর্ঘ দিনের গবেষণা এবং অধ্যাবসায়ের ফল মিলল। ৪৪ বছর বয়সি এক ব্রিটিশ নাগরিক সম্পূর্ণ HIV মুক্ত হলেন। বর্তমানে তাঁর রক্তে এই রোগের কোনও জীবাণু দেখা যাচ্ছে না। যদি আরও বেশ কিছু দিন এমনই থাকে, তবে এটা বিশ্বের চিকিত্সাে বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক বিরাট সাফল্য বলে ধরা হবে এবং এই ব্রিটিশ নাগরিক হবেন ইতিহাসে প্রথম ব্যক্তি যিনি এইডস থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাবেন। বেশ কয়েক বছর ধরে যুক্তরাজ্যের-র ৫টি বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা মিলে ৫০ জন এইডস রোগীর ওপর এই পরীক্ষা চালাচ্ছেন। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ হেল্থ রিসার্চ অফিস-এর ম্যানেডিং ডিরেক্টর মার্ক স্যামুয়েল্স বলেন, ‘এইডস নিরাময়ের জন্য আমরা সম্ভাব্য সমস্ত রকম পরীক্ষা চালাচ্ছি। এখনই এ বিষয়ে বিশদে কিছু বলছি না। তবে এটুকু বলতে পারি আমরা বেশ খানিকটা এগিয়েছি।’ এইচআইভি-র চিকিত্সা করা যে খুবই কঠিন তা বলাই বাহুল্য। এই রোগের জীবাণু সরাসরি মানব দেহের রোগ প্রতিরোধ সিস্টেমকে আক্রমণ করে এবং ডিএনএ-র T-Cell-এর সঙ্গে যুক্ত হয়ে যায়। এর ফলে শরীর স্বাভাবিক রোঘ প্রতিরোধ ক্ষমতা তো হারিয়েই ফেলে তার সঙ্গে ক্রমাগত ভাইরাস তৈরি করতে থাকে। বর্তমানে অ্যান্টি-রেট্রোবাইরাল থেরাপির সাহায্যে এই রোগকে অনেকাংশে ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হয়েছে। এই চিকিত্সাল পদ্ধতিতে সক্রিয় এইচআইভি সংক্রামিত T-Cell গুলিকে মেরে ফেলা সম্ভব। কিন্তু যে কোষ গুলি সক্রিয় নয় তা শরীর থেকে বের করতে পারে না। তাই ভাইরাস তৈরির কাজ বন্ধ হয় না। এই গবেষণায় দু’টি পদ্ধতিতে এই রোগ নিরাময়ের রাস্তা খোঁজা হচ্ছে। একটি ভ্যাক্সিনের সাহায্যে সক্রামিত কোষগুলিকে খুঁজে শরীর থেকে বার করে। দ্বিতীয়ত একটি নতুন ওষুধ (Vorinostat)-এর সাহায্যে লুকিয়ে থাকা সংক্রামিত কোষগুলিকে সক্রিয় করে তোলা হচ্ছে, যাতে সেগুলিকে শরীর থেকে বার করা যায়। ইম্পেরিয়াল কলেজ লন্ডনের চিকিত্সেক সারা ফিডলার বলেন, ‘এই থেরাপির সাহায্যে শরীর থেকে সমস্ত সংক্রামিত কোষ বার করা সম্ভব হচ্ছে।’ তিনি আরও জানিয়েছেন, আগামী ৫ বছর ধরে আরও পরীক্ষা চালানো হবে। আশা করা যায়, এই পদ্ধতিতেই এইডস থেকে সম্পূর্ণ মুক্তি পাওয়া সম্ভব। উৎসঃ kalerkantho প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 10 Oct, 2015 দক্ষিণ এশিয়ায় জমজমাট কিডনি ব্যবসা! 05 Sep, 2015 অর্থলোভে অহেতুক অস্ত্রোপচার 04 Jul, 2015 ঘুষ দিন, সেবা নিন 06 Nov, 2016 পান সুপারিতে মুখের ক্যান্সার : সচেতনতায় লন্ডনের বাঙালী পাড়ায় সরকারী প্রচারাভিযান 26 Aug, 2016 বড়দের ওষুধ খাচ্ছে শিশুরা 07 Aug, 2016 রেডিয়েশনের ক্যান্সার ঝুঁকিতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ! 22 Jun, 2016 বোমা তৈরির সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেক বিস্কুট 21 Jun, 2016 অ্যাসিড ও কাপড়ের রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কোমল পানীয়! 28 Apr, 2016 সাবধান, লিচুতে নতুন ভাইরাস 22 Apr, 2016 সেবা নয়, বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে বারডেম হাসপাতাল 09 Apr, 2016 শিশুখাদ্যে প্লাস্টিক: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভবিষ্যত! 09 Apr, 2016 দেশের শতভাগ মিষ্টি, ৭৫ ভাগ সয়াবিন তেলে ভেজাল 09 Apr, 2016 ১০ টাকার ডাক্তার! 16 Feb, 2016 শেকৃবিতে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উদ্ভিদ 07 Feb, 2016 বাংলাদেশেও ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্মাতে পারে 04 Feb, 2016 শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে, কারণ ফাস্টফুড 03 Feb, 2016 প্রতিবন্ধিত্বের ৩ শতাংশই ভুল চিকিৎসায় 01 Feb, 2016 দেশে নতুন রোগের প্রকোপ 27 Jan, 2016 সাবধান! মাছ-মুরগির খাদ্যে ক্যানসারের বীজ 27 Jan, 2016 ভয়ানক এক রোগে আক্রান্ত দেশের লাখো টিন এজার, যুবক-যুবতী ! 27 Jan, 2016 মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া >>শাকসবজিও নিরাপদ নয়! 26 Jan, 2016 পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে যে ৭৫ হাসপাতাল 21 Jan, 2016 পাউরুটিতে জেলির নামে এ কী ব্যবহার হচ্ছে ! 16 Jan, 2016 বিষাক্ত কয়েলের ধোঁয়ায় কমছে প্রজনন ক্ষমতা 16 Jan, 2016 নেত্রকোনার অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু,আক্রান্ত অনেকে 28 Dec, 2015 ভিডিও >> অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত 24 Dec, 2015 অ্যান্টিবায়োটিক ‘নেশা’ ঘরে-ঘরে 20 Dec, 2015 মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দামি খাবার দেশে! 17 Dec, 2015 ‘মানবিক ভুল!’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই অজুহাত আর কতদিন? 06 Dec, 2015 ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ, খুলে দেয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: হৃদরোগে আক্রান্ত অর্ধেকের বয়স ৪০ এর নীচে Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> স্বাস্থ্য হৃদরোগে আক্রান্ত অর্ধেকের বয়স ৪০ এর নীচে 29 Sep, 2016 রাজধানীর শের-ই-বাংলা নগরের জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট হাসপাতালে রয়েছে ৪১৪টি শয্যা। প্রতিটি শয্যায় চলছে হৃদরোগে আক্রান্ত বিভিন্ন রোগীর চিকিৎসা। সেখানে সদ্য জন্মলাভ করা শিশু যেমন রয়েছে তেমনি রয়েছেন ৯০ ঊর্ধ্ব প্রবীণ নারী। হাসপাতালে অপেক্ষমাণ রয়েছেন আরো কয়েক হাজার রোগী। হৃদরোগ চিকিৎসার জন্য দেশের একমাত্র সরকারি হাসপাতালের পঞ্চাশ শতাংশ রোগীই ৪০ বছরের নীচে। জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটের আবাসিক চিকিৎসক (আর.পি) ডা. পীযুষ বিশ্বাস জানালেন এসব তথ্য। তিনি বলেন, ‘হৃদরোগের শিকার সাধারণত বয়স্করাই যে হচ্ছে এটি সত্য নয়। শিশু ও নারীরাও হৃদরোগের ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন। অল্প বয়সে পুরুষরাও এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন।’ আজ ২৯ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব হার্ট দিবস। বাংলাদেশসহ বিশ্বের ১০০টি দেশ গুরুত্বের সঙ্গে দিবসটি পালন করছে। দিবসটির এবারের প্রতিপাদ্য ‘পাওয়ার ইয়র লাইভ’। খাবারে কিছু পরিবর্তন এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার পাশাপাশি মদপান ও ধূমপান বন্ধ করতে পারলেই আপনি হয়ে উঠবেন আরো শক্তিশালী। বাংলাদেশ ২০০০ সাল থেকে দিবসটি জাতীয়ভাবে পালন করছে। স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়, ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার উদ্যোগে রোগ সম্পর্কে জনসচেতনতা বাড়াতে সেমিনার, সিম্পোজিয়ামের আয়োজন করেছে। জানা গেছে, বিশ্বের এক নম্বর হন্তারক রোগ হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছে হৃদরোগকে। প্রতিবছর প্রায় পৌনে দুই কোটি মানুষ মারা যাচ্ছে এই রোগে। পরিসংখ্যানে দেখা গেছে, শুধু পুরুষ নয়, শিশু এবং নারীরাই অধিকতর হৃদরোগের ঝুঁকির ভেতরে অবস্থান করছে। আর সে কারণেই বারবার শিশু ও নারীর ওপর বিশেষ দৃষ্টি দেওয়ার কথা বলা হয়। শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ডা. আখতারুজ্জামান পরিবর্তন ডটকমকে বলেন, ‘ওয়ার্ল্ড হার্ট ফেডারেশনের ওয়েবসাইট থেকে জানা যায়, স্বাস্থ্যকর খাবার এবং ধূমপানমুক্ত পরিবেশ ছাড়া একজন ব্যক্তির পক্ষে হৃদরোগের ব্যাপারে ঝুঁকিমুক্ত থাকা কঠিন। তাই সকলে মিলেই সুস্থ হার্টবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।’ তিনি আরো বলেন, ‘শিশুরা জাতির ভবিষ্যৎ। সেই ভবিষ্যৎ সচল রাখার জন্য শিশুর সুস্থ হার্টের দিকে আমাদের বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। একইভাবে বাংলাদেশের জনসংখ্যার অর্ধেকই নারী, তাই হার্ট সুরক্ষার আন্দোলন ও তৎপরতার বাইরে নারীকে রাখা হলে সেটা হবে ঠিক হবে না।’ মানসিক উদ্বেগ উৎকণ্ঠা, আবেগের আগ্রাসন, কাজের বাড়তি চাপ, জীবনযাপনের চাপ প্রভৃতি অসংক্রামক রোগের ঝুঁকি বাড়ায়। ক্রমাগত মানবজীবনে আকাঙ্ক্ষা বেড়ে যাওয়া, কাজকর্মে তাড়াহুড়া, আধুনিক জীবনযাত্রায় নিত্যদিনের দুর্ভাবনা সরাসরি মানবদেহের রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়ায় প্রতিক্রিয়া ঘটায় বা প্রভাব ফেলে। জীবনের দৌড়ে যদি গতি বাড়ানো কাজ করে মন, তবে স্বাভাবিকভাবেই চাপ বাড়ে মনে। আজকের মানুষ সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ছুটছে। স্বাভাবিকভাবেই এর জন্য তাকে চড়া দামও গুণতে হচ্ছে। ফলস্বরূপ অনেকেই আক্রান্ত হচ্ছেন অসংক্রামক রোগে। জাতীয় হৃদরোগ ইন্সটিটিউট হাসপাতালের নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একজন চিকিৎসক জানান, আউটডোরে চার শতাধিক রোগীর জায়গায় হাজার জনকে চিকিৎসা দিতে হচ্ছে। আউটডোরে এখন বেশির ভাগ রোগীকে ওষুধ দিয়ে দেওয়া হয়। বর্তমানে এখানে ৯৯ জন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছেন। ২১৫ জন মেডিকেল অফিসার রয়েছেন। ৯৯৭ জন কর্মচারী রয়েছেন। কিন্তু এতো সংখ্যক রোগীর চিকিৎসায় মান রাখা কঠিন হয়ে পড়েছে। হাসপাতাল ঘুরে দেখা গেল বেড না পাওয়ায় অনেক রোগীকেই মাটিতে বিছানা পেতে দেওয়া হয়েছে। সেখানেই তাদের চিকিৎসা চলছে। চাঁদপুর থেকে এসেছেন আমেনা বেগম হোসেন (৫২)। তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। বেড না পাওয়ায় মাটিতে পাতা বিছানাতেই চিকিৎসা চলছে তার। আমেনা বেগম হোসেনের আত্মীয় অভিযোগ করলেন, এখানে বেড বিক্রি হয়। গার্ডরা টাকা নেয়। আমি এক গার্ডকে কিছু টাকা দিয়ে রেখেছি। এখনও বেড পাইনি। এখানের চিকিৎসা খরচ ক্লিনিকের চেয়ে কম। তবে বেড পাওয়া একটু মুশকিল। মিরপুর থেকে হার্টে ছিদ্র নিয়ে হাসপাতালে এসেছে সুমন রহমান। তার বাবা একজন সিএনজি অটোরিকশা চালক। জানালেন, জন্মের পর থেকেই সুমনের হার্টে ছিদ্র থাকায় স্কুলে পাঠাতে পারিনি। সামর্থ্য কম। এখানে এসেছি চিকিৎসা নিতে। কিন্তু বেড পাইনি। তাই মেঝেতে বেড নিয়েছি গার্ডকে ২০০ টাকা দিয়ে। গাজীপুর থেকে আব্দুল হাকিম তার স্ত্রীকে নিয়ে এসেছেন এ হাসপাতালে। বললেন, স্থানীয় সরকারি হাসাপাতাল থেকে এখানে আসতে বলেছে। ২ দিন ধরে মেঝেতে পরে রয়েছে আমার স্ত্রী। কোনো ডাক্তার বা পরীক্ষার খবর নেই। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা জেনেভায় প্রকাশিত বিশ্ব স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান রিপোর্টে বলেছে, হৃদরোগ ও রক্তনালীর রোগ এবং ক্যান্সারের অসংক্রামক রোগ মানবজাতির স্বাস্থ্যহানির জন্য প্রধান হুমকি হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং তা আরো তীব্রতর হওয়ার প্রবণতা রয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, কেবল ২০০৮ সালে বিশ্বে প্রায় ৩ কোটি ৬০ লাখ মানুষ অসংক্রামক রোগের কারণে মারা গেছে। এ সংখ্যা একই বছরে বিশ্বে মৃত্যুর মোট সংখ্যার প্রায় ৬৩ শতাংশ। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা মনে করে, মানুষের গড়পড়তা আয়ু একটানা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে বয়োজ্যেষ্ঠ জনসংখ্যা স্থায়ীভাবে বাড়ছে। ভবিষ্যতে অসংক্রামক রোগের কারণেও মৃত্যুবরণকারী লোকসংখ্যা আরো বাড়বে। অনুমান অনুযায়ী, ২০৩০ সাল পর্যন্ত বিশ্বে অসংক্রামক রোগে মৃত্যুবরণকারী লোকসংখ্যা ৫ কোটি ৫০ লাখ হবে। উৎসঃ পরিবর্তন প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 10 Oct, 2015 দক্ষিণ এশিয়ায় জমজমাট কিডনি ব্যবসা! 05 Sep, 2015 অর্থলোভে অহেতুক অস্ত্রোপচার 04 Jul, 2015 ঘুষ দিন, সেবা নিন 06 Nov, 2016 পান সুপারিতে মুখের ক্যান্সার : সচেতনতায় লন্ডনের বাঙালী পাড়ায় সরকারী প্রচারাভিযান 26 Aug, 2016 বড়দের ওষুধ খাচ্ছে শিশুরা 07 Aug, 2016 রেডিয়েশনের ক্যান্সার ঝুঁকিতে দেশের বেশিরভাগ মানুষ! 22 Jun, 2016 বোমা তৈরির সরঞ্জামাদী দিয়ে তৈরি হচ্ছে কেক বিস্কুট 21 Jun, 2016 অ্যাসিড ও কাপড়ের রঙ দিয়ে তৈরি হচ্ছে কোমল পানীয়! 28 Apr, 2016 সাবধান, লিচুতে নতুন ভাইরাস 22 Apr, 2016 সেবা নয়, বাণিজ্যিক রূপ নিয়েছে বারডেম হাসপাতাল 09 Apr, 2016 শিশুখাদ্যে প্লাস্টিক: স্বাস্থ্যঝুঁকিতে ভবিষ্যত! 09 Apr, 2016 দেশের শতভাগ মিষ্টি, ৭৫ ভাগ সয়াবিন তেলে ভেজাল 09 Apr, 2016 ১০ টাকার ডাক্তার! 16 Feb, 2016 শেকৃবিতে ক্যান্সার ও ডায়াবেটিস প্রতিরোধী উদ্ভিদ 07 Feb, 2016 বাংলাদেশেও ছোট মস্তিষ্কের শিশু জন্মাতে পারে 04 Feb, 2016 শিশু-কিশোরদের মধ্যে ক্যান্সার বাড়ছে, কারণ ফাস্টফুড 03 Feb, 2016 প্রতিবন্ধিত্বের ৩ শতাংশই ভুল চিকিৎসায় 01 Feb, 2016 দেশে নতুন রোগের প্রকোপ 27 Jan, 2016 সাবধান! মাছ-মুরগির খাদ্যে ক্যানসারের বীজ 27 Jan, 2016 ভয়ানক এক রোগে আক্রান্ত দেশের লাখো টিন এজার, যুবক-যুবতী ! 27 Jan, 2016 মাত্রাতিরিক্ত কীটনাশকের বিষক্রিয়া >>শাকসবজিও নিরাপদ নয়! 26 Jan, 2016 পরিবেশ ছাড়পত্র ছাড়াই চলছে যে ৭৫ হাসপাতাল 21 Jan, 2016 পাউরুটিতে জেলির নামে এ কী ব্যবহার হচ্ছে ! 16 Jan, 2016 বিষাক্ত কয়েলের ধোঁয়ায় কমছে প্রজনন ক্ষমতা 16 Jan, 2016 নেত্রকোনার অজ্ঞাত রোগে ৫ জনের মৃত্যু,আক্রান্ত অনেকে 28 Dec, 2015 ভিডিও >> অসুস্থ গরুর মাংস খেয়ে কুষ্টিয়ায় ১৯ জন অ্যানথ্রাক্স রোগে আক্রান্ত 24 Dec, 2015 অ্যান্টিবায়োটিক ‘নেশা’ ঘরে-ঘরে 20 Dec, 2015 মেয়াদোত্তীর্ণ বিদেশি দামি খাবার দেশে! 17 Dec, 2015 ‘মানবিক ভুল!’ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের এই অজুহাত আর কতদিন? 06 Dec, 2015 ফেসবুকের সঙ্গে আলোচনা ফলপ্রসূ, খুলে দেয়া হবে : স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট:সাবেক এমপির মেয়ের ইসলাম গ্রহণ নিয়ে ইতালিতে তোলপাড় Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ সংবাদ নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন সংবাদ >> ধর্ম সাবেক এমপির মেয়ের ইসলাম গ্রহণ নিয়ে ইতালিতে তোলপাড় 20 Jun, 2016 টুডে ডেস্ক এখন তার নাম আয়েশা। ফেসবুকেও বদলে দিয়েছেন নিজের আগের নামটি- ম্যানুয়েলা ফ্রাংকো বারবাতো। পূর্ণাঙ্গ হিজাবী এই নারী ইতালির এক সাবেক এমপি ফ্রাংকো বারবাতোর মেয়ে। তিনি তার বাবার খ্রিষ্টধর্ম থেকে ইসলামে দীক্ষিত হয়েছেন। ম্যানুয়েলার এই ইসলাম গ্রহণের ঘটনা এখন ইতালিতে আলোচনার বিষয়। খ্রিষ্টান উগ্রপন্থীরা কঠোরভাবে সমালোচনা করছেন তার। এমনকি সেই তালিকায় আছেন তার জন্মদাতা বাবাও! ফ্রাংকো বারবাতোকে হাফিংটন পোস্টের পক্ষ থেকে প্রশ্ন করা হয়েছিল, আপনার মেয়ে তো মুসলমান হয়ে গেল, এখন আপনার কেমন লাগছে? তার উত্তর ছিল, ‘শুধু খারাপ না, খুবই খারাপ লাগছে। কারণ এটি একটি অত্যন্ত কঠোর ধর্ম, খুবই চরমপন্থী, একদম সেকেলে! এই ধর্মটি মৌলবাদী। আমার মেয়ে আমার সাথে থাকাবস্থায় আমি নিজে দেখেছি। প্রতিদিন দেখেছি নামাজের সময় হলে সে সন্তানের কথাও ভুলে যায়! এজন্য আমি তার প্রতি রাগ করতাম। সে যা নিজের জন্য পছন্দ করেছে আমি তাতে খুবই ব্যতিত!’ তবে আয়েশা ইসলাম গ্রহণ করতে পেরে খুবই আনন্দিত, সন্তুষ্ট। তিনি বলেন, ‘আমার আত্মার পরিশুদ্ধির জন্য আমি গর্বিত। এসব আল্লাহর নিয়ম, আমার অভিযোগ করার কী আছে?’ নিজের হিজাব পরিধান নিয়ে চারপাশে যত কথা। তার উত্তরে আয়েশা বলেন, ‘হিজাব আমার জীবনের অংশ, যা আল্লাহ আমার জন্য পছন্দ করে দিয়েছেন।’ আয়েশা আগে বাবার সাথে থাকলেও প্রকাশ্যে ইসলাম গ্রহণের ঘোষণা দেয়ার পর তার স্বামীকে নিয়ে ভারতে চলে গেছেন। সেখানে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে নিজের গ্রাজুয়েশন করছেন। বিবাহিত জীবনে তার দুই শিশু সন্তান রয়েছে। ইতালিতে ১৭ লাখ মুসলমানের বসবাস, যার মধ্যে প্রায় বিশ হাজার সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অন্যান্য ধর্ম থেকে ইসলাম গ্রহণ করেছেন বলে ইতালির সরকারি সংস্থার তথ্য। সূত্র: হাফিংটন পোস্ট। প্রতি মুহুর্তের খবর পেতে এখানে ক্লিক করে আমাদের ফেসবুক পেজে লাইক দিন পাঠক মন্তব্য sujon khan, Gazipur, 21 Jun,2016 02:29pm thanks sujon khan, Gazipur, 21 Jun,2016 02:33pm thanks সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য "অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়" অন্যান্য সংবাদ 03 Jun, 2015 ইফার ফতোয়ার সিদ্ধান্ত বদলের নেপথ্যে মন্ত্রীর নামাজ! 04 Nov, 2016 কমিউনিস্ট নিষ্পেষণে সোভিয়েত রাশিয়ায় কুরআনের শিক্ষা জীবিত রাখার অনন্য কাহিনী 21 Oct, 2016 যে কারণে ইসলামের ছায়াতলে ওগান রাজ্যের গভর্নর-পত্নী 12 Oct, 2016 ছুরি নিষিদ্ধ তাই ব্লেড দিয়েই ক্ষত বিক্ষত বুক 17 Sep, 2016 এক দশকে হাজির সংখ্যা সর্বনিম্ন 15 Sep, 2016 ৩০ বছর ধরে মুসলিম সমাজ জেনেই ইসলাম গ্রহণ করেছি ঃ সৌদিতে নিযুক্ত বৃটিশ রাষ্ট্রদূত 15 Sep, 2016 সৌদিতে কর্মরত ব্রিটিশ রাষ্ট্রদূতের ইসলাম গ্রহণ ও হজ্জ পালন 14 Sep, 2016 কোরবানীর পশু জবাইয়ের ছবি ফেসবুকে, ইসলাম কী বলে 12 Sep, 2016 ‘কঠিন সময়, এক হও মুসলমানরা’ 11 Sep, 2016 ভিডিও >> কাবার গিলাফ পরিবর্তন চলছে 11 Sep, 2016 তরুণ প্রজন্মের প্রাণবন্ত হাজীরা বদলে দিচ্ছেন পবিত্র হজ 10 Sep, 2016 মিনায় নেমেছে হজযাত্রীর ঢল, ‘লাব্বাইক আল্লাহুম্মা লাব্বাইক’ ধ্বনিতে মুখর 09 Sep, 2016 নজিরবিহীন নিরাপত্তার মধ্য দিয়ে আজ শুরু হয়েছে পবিত্র হজের আনুষ্ঠানিকতা 07 Sep, 2016 তুর্কী খেলাফতের প্রতিষ্ঠিত রেললাইনের ছবি >> মদিনা থেকে ইস্তানবুল 02 Sep, 2016 পবিত্র ঈদুল আজহা ১৩ সেপ্টেম্বর 01 Sep, 2016 চাঁদ দেখা যায়নি, সৌদি আরবে ঈদ ১২ সেপ্টেম্বর 13 Aug, 2016 মোহরানা হিসেবে বই নিয়ে প্রশংসা কুড়ালেন ভারতীয় মুসলিম তরুণী 27 Jul, 2016 মন্দিরে ঢুকতে বাধা, মুসলিম হচ্ছে আড়াইশ হিন্দু পরিবার 14 Jul, 2016 জিব্রাইলের (আ.) সাথে সৌদি ইমামের সাক্ষাৎ! 06 Jul, 2016 রাত পোহালেই খুশির ঈদ 05 Jul, 2016 চাঁদ দেখা যায়নি, ঈদ বৃহস্পতিবার 06 Jun, 2016 দেশের আকাশে রমজানের চাঁদ, মঙ্গলবার থেকে রোজা 05 Jun, 2016 সৌদি আরবসহ মধ্যপ্রাচ্যে সোমবার থেকে রোজা শুরু 05 Jun, 2016 চাঁদ দেখা গেলে সোমবার থেকে সৌদিতে রমজান 31 May, 2016 এক মায়ের চোখের পানি ভারতের মুসলিমদের ঐক্যবদ্ধ হতে প্রেরণা যোগাচ্ছে 29 May, 2016 ‘মক্কা-মদিনাতেও রাম মন্দির নির্মাণ করা হবে’ 12 Mar, 2016 মুসলিমদের চাকরি দিতে অস্বীকার করল ভারত সরকারের মন্ত্রণালয় 15 Feb, 2016 ধর্ম কি আদৌ টিকে থাকবে, না হারিয়ে যাবে? 15 Feb, 2016 বই মেলায় ইসলাম ও রাসুল অবমানকর অশ্লীল বই 28 Jan, 2016 রক্তসাগরে ভাসছে দিশেহারা মুসলমান: কোনপথে মুক্তি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2
বিডিটুডে.নেট: সাম্প্রদায়িকতা, এই আগুনের শেষ কোথায়? Write to Editor: editorbdt@yahoo.com RSS English Version , ২৪ কার্তিক ১৪২৩; ; হোম সংবাদ নির্বাচিত কলাম নির্বাচিত কলাম ভিডিও নিউজ টুডে ব্লগ সাপ্তাহিকী ব্লগ সাক্ষাৎকার কার্টুন মতামত ফিচার দিনের উক্তি উচ্চ শিক্ষা আর্কাইভ রাজনীতি জাতীয় মহানগর ব্যবসা বিনোদন খেলা আন্তর্জাতিক প্রযুক্তি সাহিত্য স্বাস্থ্য ক্যাম্পাস পরিবেশ ধর্ম কিডস টিভি নিউজ টকশো ভিডিও ফুটেজ ইউটিউব ভিডিও কার্টুন (বহির্বিশ্ব) কার্টুন কলাম আনু মুহাম্মদ test@gmail.com সাম্প্রদায়িকতা, এই আগুনের শেষ কোথায়? 15 June 2016, Wednesday সাম্প্রদায়িকতা একটা বিভেদ ঘৃণা আর গ্লানিকর, মন আর তৎপরতার নাম। সাধারণভাবে ধর্মীয় এক সম্প্রদায়ের প্রতি অন্য সম্প্রদায়ের ঘৃণা, বিদ্বেষ, বৈষম্য, সহিংসতা বোঝাতেই এই শব্দটি ব্যবহৃত হয়। তবে আগেই বলেছি, সম্প্রদায়ের পরিচয় কেবল ধর্ম দিয়ে হয় না। জাতি, ভাষা, বর্ণ, অঞ্চল নানাভাবে একটি সম্প্রদায় পরিচিত হতে পারে। এরকম কি কোনো সমাজ আমরা পাব যেখানে ধর্মীয় পরিচয়ে সংঘাত হচ্ছে, কিন্তু অন্যান্য জাতি, ধর্ম, ভাষা বা লিঙ্গীয় পরিচয়ে ভিন্ন ভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে কোনো সংঘাত বা বৈষম্য নেই? বা শ্রেণিগত শোষণ নিপীড়ন নেই? না, এরকম পাওয়া যাবে না। বৈষম্যের শেকড় যদি সমাজে থাকে তা বহুভাবে প্রকাশিত হয়। বৈষম্য, ঘৃণা, বিদ্বেষ, ডালপালা ছড়ায়। এক বৈষম্য ঢাকতে গিয়ে অন্য বৈষম্য বা বিভেদ সামনে আনতে সবসময়ই তৎপর থাকে এই বিভেদ বা বৈষম্য থেকে সুবিধাভোগী ক্ষমতাবানরা। সম্প্রদায়গত বোধ মানুষের থাকেই। একজন ব্যক্তি এককভাবে চলতে পারে না, সবসময় সমষ্টিকে খোঁজে। শ্রেণি, ভাষা, জাতীয়তা, বর্ণ, লিঙ্গ, গোত্র, অঞ্চল, দেশ, ধর্মবিশ্বাস ইত্যাদি নানা পরিচয়ে মানুষ আরও অনেকের সঙ্গে নিজের যুক্ততা বোধ করে। কিন্তু সব পরিচয় একসঙ্গে একই ধরনের সামষ্টিক বোধ তৈরি করে না বলে পারিপার্শ্বিকতার কারণে একটাকে ভেদ করে অন্যটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। কোনটি সমাজে প্রাধান্য বিস্তার করবে তা নির্ভর করে ওই সমাজের রাজনৈতিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক চেতনা ও সক্রিয়তার ওপর। সমাজ ও রাষ্ট্রে যারা ক্ষমতাবান তাদের জন্য ধর্ম, জাতি, বর্ণগত এমনকি আঞ্চলিক বিভেদ বা সংঘাত প্রায়ই একেকটি সুযোগ হিসেবে কাজ করে। নিপীড়িত মানুষের মুক্তির লড়াইকে মোকাবিলা করতে গিয়ে ইতিহাসের বিভিন্ন পর্বে, বিভিন্ন দেশে তারা এসব বিভেদকে উস্কানি দিয়েছে, ঢাল হিসেবেও ব্যবহার করেছে। শ্রেণি লিঙ্গ তো বটেই জাতি ধর্ম পরিচয়ে কেউ নির্যাতিত হলে তার বিরুদ্ধে লড়াই আর নিপীড়নের জন্য জাতি ধর্ম পরিচয়কে উস্কানি দিয়ে সংঘাত তৈরি করা এক কথা নয়। মানুষের মধ্যে কোনো কোনো পার্থক্য বিভেদ বা বৈষম্য তৈরি করে। আবার কোনো কোনো পার্থক্য আনে বৈচিত্র্য। পার্থক্য বা বৈচিত্র্য মানেই তা বৈষম্যের কারণ হতে পারে না। প্রাকৃতিকভাবে বা জন্মগতভাবে মানুষ যেসব পরিচয় লাভ করে অর্থাৎ গায়ের রং, গঠন, লিঙ্গ, ধর্মবিশ্বাস, জাতি, ভাষা, সংস্কৃতি ইত্যাদিতে একজন ব্যক্তির কোনো হাত নেই, এসব ক্ষেত্রে পার্থক্য মানুষের মধ্যে বৈচিত্র্য আনে। এই বৈচিত্র্য সমাজকে সমৃদ্ধ করে। কিন্তু পার্থক্যকে ভর করে কোনো সম্প্রদায়ের যতি অধিকার ও ক্ষমতা সংকোচন করা হয়, তাহলে এই পার্থক্যই বৈষম্যের আকার নেয়। আবার একই ভাষাভাষী বা ধর্ম বা লিঙ্গের মধ্যেও বৈষম্য আসতে পারে। মালিকানা, সম্পদের ওপর অধিকার, শিক্ষা, চিকিৎসা, জীবন ও জীবিকা, স্বাধীনতা, সামাজিক, রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ক্ষমতা ইত্যাদি ক্ষেত্রে যখন সমাজে গভীর পার্থক্য তৈরি হয় তখনই দেখা দেয় শ্রেণিগত বৈষম্য। এসব বৈষম্য যখন থেকে তৈরি হয়েছে তখন থেকে এর বিরোধী লড়াইও সমাজের অবিচ্ছেদ্য ভাষায় পরিণত হয়েছে, যা তৈরি করে মানুষের মানবিক সংহতি, নারী, পুরুষ, ধর্ম, জাতি, ভাষাগত পার্থক্য সঙ্গে নিয়েই। বৈষম্য নিপীড়ন আধিপত্য বিরোধী সেই সংহতি সম্প্রদায়গত সংহতি থেকে মৌলিকভাবেই ভিন্ন এক বিকশিত ঐক্য, যা অপ্রয়োজনীয় বিভেদকে পরাস্ত করতে সক্ষম হয়। সাম্প্রদায়িকতার ঘৃণ্য মন ও অপশক্তি পরাজিত করতে মানুষের সেই ঐক্য ও সংহতির বিকাশে রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক ও মতাদর্শিক সক্রিয়তাই একমাত্র রক্ষাকবজ হতে পারে। এক্ষেত্রে যেদেশে যারা ধর্মীয় বা জাতিগতভাবেই সংখ্যাগরিষ্ঠ তাদেরই দায়িত্ব বেশি। পাঠক মন্তব্য সকল মন্তব্য দেখার জন্য ক্লিক করুন কীবোর্ড নির্বাচন করুন: Bijoy UniJoy Phonetic English নাম (অবশ্যই দিতে হবে) ইমেইল (অবশ্যই দিতে হবে) ঠিকানা মন্তব্য “অবাঞ্চিত মতামত নিয়ন্ত্রনের জন্য সঞ্চালক কতৃক অনুমোদনের পর মতামত প্রকাশিত হয়” অন্যান্য কলাম 29 Sep, 2016 সুন্দরবন বিনাশ মানবে না কেউ 25 Sep, 2016 প্যারিস চুক্তি ও বাংলাদেশের উন্নয়ন মডেল 18 Sep, 2016 দুইদেশের বন্ধুত্বের কাঁটা : রামপাল থেকে ফারাক্কা 27 Aug, 2016 সম্পদ আছে, নেই জনপন্থী দৃষ্টিভঙ্গি 17 Aug, 2016 আক্রান্ত তরুণদের সুপথে আনতে যা করণীয় 31 Jul, 2016 লড়াই–সংগ্রামে মাঠে থাকা মানুষটি 20 Jul, 2016 রাষ্ট্র ও সমাজ বিশ্বাস-অবিশ্বাসের সীমা 19 Jul, 2016 প্রশ্ন তোলাই বড় কাজ 11 Jul, 2016 সন্ত্রাসবাদ বৃত্তের ভেতর বাহির 28 Jun, 2016 ট্রানজিট ও কাঁটাতারের বন্ধুত্ব 26 Jun, 2016 সাগরচুরি থেকে বনবিনাশ 22 Jun, 2016 ক্রসফায়ারের গল্প 02 Jun, 2016 বাজেটে সাধারণ মানুষ কতটা লাভবান হবে? 01 May, 2016 জাতীয় ন্যূনতম মজুরি ও নিরাপত্তা চাই 13 Apr, 2016 তনু থেকে পয়লা বৈশাখ 31 Jan, 2016 চাপের মুখে মানবাধিকার 26 Jan, 2016 ভারতের উন্নয়ন পথ ও বৈপরীত্য 04 Jul, 2015 গ্রিসের যুদ্ধ ও ট্রয়কা 22 Jun, 2015 বাজেট এবং সম্পদ স্থানান্তর 25 May, 2015 বাজেট বাগাড়ম্বরের আড়ালে 06 May, 2015 সুন্দরবন থেকে রূপপুর: ভুল তথ্য ও অস্বচ্ছতা 10 Feb, 2015 ক্ষমতার বিষচক্রের বিরুদ্ধে জনগণের এজেন্ডা 16 Jan, 2015 চীন :: পরাশক্তির বিবর্তন (পর্ব – ১) 16 Jan, 2015 চীন :: পরাশক্তির বিবর্তন (পর্ব – ১) 25 Dec, 2014 সন্ত্রাসী রাজনীতির পেছনে লুটেরা অর্থনীতি Write to Editor: editorbdt@yahoo.com All contents copyright © BD Today. All rights reserved. X
source: https://huggingface.co/datasets/HPLT/hplt_monolingual_v1_2