content
stringlengths 1
63.8k
⌀ |
---|
গাজীপুরের কালিয়াকৈর উপজেলার তেলিরচালা এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার রাতের টিফিন খেয়ে একটি পোশাক কারখানার ৫০০ শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এ ঘটনায় বিক্ষোভ করেছেন ওই কারখানার শ্রমিকেরা।সফিপুর মডার্ন হাসপাতালের জরুরি বিভাগের চিকিত্সক আল আমিন প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, খাদ্যে বিষক্রিয়ায় তাঁরা (শ্রমিকেরা) অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। এতে আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। অসুস্থদের চিকিত্সা দেওয়া হয়েছে।কারখানার শ্রমিক ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার তেলিরচালা এলাকার সেজাদ সোয়েটার লিমিটেড কারখানার শ্রমিকদের আজ রাত সাড়ে সাতটার দিকে টিফিন দেওয়া হয়। টিফিনে ছিল ডিম, রুটি, পেটিস ও কলা। টিফিন খেয়ে শ্রমিকেরা যথারীতি কাজে যোগ দেন। ওই টিফিন খাওয়ার প্রায় এক ঘণ্টা পর রাত সাড়ে আটটার দিকে কয়েকজন শ্রমিকের বমি ও পেট ব্যথা শুরু হয়। এরপর ধীরে ধীরে পুরো কারখানার শ্রমিকেরা অসুস্থ হতে থাকে। অনেকেই কারখানার মেঝেতে ঢলে পড়ে। এতে পাঁচ শতাধিক শ্রমিক অসুস্থ হয়ে পড়ে।পরে কারখানা কর্তৃপক্ষ দ্রুত যানবাহনের ব্যবস্থা করে তাদের সফিপুর জেনারেল হাসপাতাল, সফিপুর মডার্ন হাসপাতাল, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সসহ বিভিন্ন ক্লিনিকে ভর্তি করে। বাসি পচা খাবার দেওয়ায় শ্রমিকরা ক্ষুব্ধ হয়ে কারখানার সামনে বিক্ষোভ করে। খবর পেয়ে পুলিশ গিয়ে শ্রমিকদের বুঝিয়ে ও খাবার সরবরাহ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দিলে শ্রমিকেরা শান্ত হয়।সফিপুর জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি শ্রমিক জাকির হোসেন ও আসমা আক্তার বলেন, টিফিন খাওয়ার সময় ডিম ও কেক থেকে দুর্গন্ধ বের হচ্ছিল। এ কারণে অনেকেই ওই খাবার খায়নি। তবে বেশির ভাগ শ্রমিকই ওই খাবার খেয়েছে।কারখানার সহকারী উত্পাদন কর্মকর্তা (এপিএম) বছির উদ্দিন বলেন, টিফিনগুলি যে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কারখানায় সরবরাহ করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।মৌচাক পুলিশ ফাঁড়ির উপ-পরিদর্শক (এসআই) সৈয়দ আজহারুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, শ্রমিকদের বুঝিয়ে শান্ত করা হয়েছে। এ ছাড়া কারখানা কর্তৃপক্ষকে খাদ্য সরবরাহ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে বলা হয়েছে। |
এবারের উইম্বলডনটা স্মরণীয় করে রাখার মিশনেই যেন নেমেছেন সাবিনা লিসিকি। চতুর্থ রাউন্ডের লড়াইয়ে সেরেনা উইলিয়ামসকে হারিয়ে শুরু করেছিলেন স্বপ্নযাত্রা। কোয়ার্টার ফাইনালে কাইয়া কানেপিকে হারাতে খুব একটা বেগ পেতে হয়নি। তবে সেমিফাইনালে কঠিন প্রতিপক্ষের মুখেই পড়তে হয়েছিল লিসিকিকে। র্যাঙ্কিংয়ের চার নম্বরে থাকা আগ্নিয়েস্কা রাদভানস্কাই ছিলেন আজকের ম্যাচের ফেবারিট। কিন্তু অঘটনের উইম্বলডনে উল্টোটাই ঘটবে, এটাই যেন স্বাভাবিক। হলোই তা-ই। উত্তেজনাপূর্ণ সেমিফাইনালে ৬-৪, ২-৬, ৯-৭ গেমের জয় দিয়ে লিসিকি প্রথমবারের মতো পা রাখলেন উইম্বলডনের ফাইনালে।প্রথম সেটে ৬-৪ গেমের জয় দিয়ে শুরুটা দারুণভাবে করেছিলেন জার্মান তারকা লিসিকি। দ্বিতীয় সেটে ঘুরে দাঁড়ান রাদভানস্কা। খেলায় সমতা ফেরান ২-৬ গেমের জয় দিয়ে। ফলাফল নির্ধারণী তৃতীয় সেটের শুরুতেও বেশ খানিকটা সময় এগিয়ে ছিলেন রাদভানস্কা। কিন্তু ৩-০ ব্যবধানে পিছিয়ে পড়ার পর যেন মরিয়া হয়ে ওঠেন লিসিকি। ঘুরে দাঁড়াতে থাকেন নাটকীয়ভাবে। দুই ঘণ্টা ১৮ মিনিটের শ্বাসরুদ্ধকর লড়াইয়ের পর শেষ হাসিটাও হেসেছেন ২৩ বছর বয়সী লিসিকি।উইম্বলডনের অপর সেমিফাইনালে মারিওন বারতোলি অনায়াসেই হারিয়েছেন বেলজিয়ামের কারস্টেন ফ্লিপকেনসকে। ৬-১, ৬-২ গেমের জয় দিয়ে ফাইনাল নিশ্চিত করেছেন বারতোলি।শিরোপা জয়ের চূড়ান্ত লড়াইয়ে আগামী শনিবার মুখোমুখি হবেন বারতোলি ও লিসিকি।— রয়টার্স |
জাতীয় সংসদে বিএনপি চেয়ারপারসন ও বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়ার দেওয়া ভাষণে ভারত সম্পর্কে আনা নানা অভিযোগের জবাব দিয়েছে দেশটি। ভারতের পক্ষ থেকে এ সংক্রান্ত একটি লিখিত জবাব খালেদা জিয়াকে দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার রাতে বিএনপির গুলশান কার্যালয়ে খালেদা জিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশে নিযুক্ত ভারতের হাইকমিশনার পঙ্কজ সরণ সৌজন্য সাক্ষাত্ করেন। সেখানে তিনি খালেদা জিয়ার কাছে ভারতের জবাব সম্বলিত একটি চিঠি দেন। এ সময় বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা রিয়াজ রহমান উপস্থিত ছিলেন। সৌজন্য সাক্ষাত্ শেষে রিয়াজ রহমান গুলশান কার্যালয় থেকে বেরিয়ে যাওয়ার সময় প্রথম আলো ডটকমকে একথা বলেন। তিনি জানান, এ ধরনের একটি চিঠি ভারতের পক্ষ থেকে সরকারকেও দেওয়া হয়েছে। বিএনপি চেয়ারপারসন ভারতের হাইকমিশনারকে বলেন, ‘আমরা এই বিষয়গুলো সম্পর্কে কিছুই জানতে পারছি না। ভারত ও বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ থেকেও কোনো কিছু জানানো হচ্ছিল না।’ গত ২৯ জুন সংসদে দেওয়া ভাষণে খালেদা জিয়া নারায়ণগঞ্জের কনটেইনার টার্মিনাল নির্মাণের জন্য বাংলাদেশকে না জানিয়ে ভারতের দরপত্র আহ্বান, তিস্তা চুক্তি না হওয়া, টিপাইমুখ বাঁধ নির্মাণ ও সীমান্তে অব্যাহত বাংলাদেশি নাগরিকদের হত্যার অভিযোগ তুলে ধরেন। আজ খালেদাকে দেওয়া চিঠিতে এ সংক্রান্ত বিষয়ে ভারতের অবস্থান তুলে ধরা হয়। এই বিষয়গুলো নিয়ে ভুল বোঝাবুঝির অবসানের জন্য ভারতের পক্ষ থেকে এ চিঠি দেওয়া হয়েছে বলে পঙ্কজ সরণ খালেদা জিয়াকে জানান।রিয়াজ রহমান প্রথম আলো ডটকমকে এ কথা জানিয়ে আরও বলেন, ‘বৈঠকে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি নিয়েও কথা হয়েছে।’ তিনি বলেন, চার সিটি করপোরেশন নির্বাচন নিয়েও কথা হয়েছে। নির্দলীয় তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি জানিয়ে খালেদা জিয়া বলেন, এর মাধ্যমে সুষ্ঠুভাবে নির্বাচন হয় এবং এটাই তারা চায়। এ সময় পঙ্কজ সরণ খালেদা জিয়াকে বলেন, ‘আপনারা তো সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জিতেছেন।’ এর জবাবে খালেদা জিয়া বলেন, ‘চার সিটিতে সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমাদের প্রার্থীরা আরও বেশি ভোটের ব্যবধানে জয়ী হতো।’দুটি দেশের পারষ্পারিক সম্পর্ক নিয়ে বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। খালেদা জিয়াকে ভারতের হাইকমিশনার বলেছেন, বিএনপি ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চায়। এ প্রসঙ্গে হাইকমিশনার বলেন, ভারতও তাই চায়। তারা বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ কোনো বিষয়ে হস্তক্ষেপ করতে চায় না। ভারত চায় দুটি দেশের জনগনের মধ্যে সম্পর্ক গড়ে উঠুক।বৈঠকে ভারতের হাইকমিশনার তাঁর দেশের প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংহের একটি অভিনন্দনপত্র বিএনপি চেয়ারপারসনকে দেন। সম্প্রতি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে ভয়াবহ বন্যায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি ও প্রাণহানির ঘটনায় দু:খপ্রকাশ করে খালেদা জিয়া চিঠি দেওয়ার মনমোহন এই পত্র দেন। |
সহজ পাসওয়ার্ডের কারণে অনলাইন অ্যাকাউন্ট সহজেই হ্যাক হয়ে যেতে পারে। জটিল পাসওয়ার্ড মনে রাখা কষ্টকর। তবে জটিল পাসওয়ার্ড মনে রাখার কষ্টের দিন হয়তো ফুরাল। পাসওয়ার্ড সহজে মনে রাখার ঝামেলা থেকে মুক্তি দিতে বিকল্প অনেক উপায় নিয়ে কাজ করছেন গবেষকেরা। দীর্ঘদিন ধরেই কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা অনলাইনে কোনো অ্যাকাউন্টের ক্ষেত্রে জটিল ও দীর্ঘ পাসওয়ার্ড ব্যবহারের প্রয়োজনীয়তার কথা বলে আসছেন। তবে বসে নেই হ্যাকাররাও। সম্প্রতি এক ঘণ্টার মধ্যেই জটিল ১৬ অক্ষরের পাসওয়ার্ড নিরাপত্তা ভেঙে দেখিয়েছেন একদল হ্যাকার। প্রযুক্তি গবেষকেরা জানিয়েছেন, কম শক্তিশালী কম্পিউটার ব্যবহার করেও খুব সহজেই পাসওয়ার্ড ভেঙে ফেলতে পারেন হ্যাকাররা। হ্যাকারদের তৈরি সফটওয়্যার দ্রুত ও সহজে অনুমান করা যায় এমন পাসওয়ার্ডগুলো ভেঙে ফেলে। একে ফোর্স অ্যাটাক বলে। আবার পাসওয়ার্ড চুরি করে সেই পাসওয়ার্ড দিয়ে অ্যাকাউন্টের যাবতীয় তথ্য চুরি করে নেওয়াকে ফিশিং অ্যাটাক বলে। এ ছাড়া ডিকশনারি অ্যাটাক বা সহজে অনুমান করা যায় এমন শব্দনির্ভর পাসওয়াার্ডগুলো দিয়েও আাাক্রমণ করে হ্যাকাররা। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ফিশিং অ্যাটাক, ফোর্স অ্যাটাক ও ডিকশনারি অ্যাটাকের মাধ্যমেই অনেক পাসওয়ার্ড হাতিয়ে নিতে পারে হ্যাকাররা। আর বিশ্বব্যাপি এ ধরনের আক্রমণ বাড়ছে। পাসওয়ার্ডের বিকল্প হচ্ছে উলকি, পিল যাঁদের পক্ষে পাসওয়ার্ড মনে রাখা কষ্টকর তাঁদের জন্য তৈরি হতে যাচ্ছে বিশেষ ধরনের ইলেকট্রনিক উলকি আর পিল। এ উলকি শরীরে লাগিয়ে রাখতে পারবেন বা বিশেষ পিল সেবন করলে এগুলো পাসওয়ার্ড হিসেবেই কাজ করবে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, শিগগিরই পাসওয়ার্ডের বিকল্প ব্যবস্থাগুলো জনপ্রিয়তা পাবে। সম্প্রতি গুগলের অধীনস্থ মটোরোলা এক ধরনের ইলেকট্রনিক ট্যাটু বা উলকি আর বিশেষ ধরনের পিল উদ্ভাবনের ঘোষণা দিয়েছে। মটোরোলার ‘মটো এক্স’ নামের নতুন একটি স্মার্টফোনের পাসওয়ার্ড হিসেবে শরীরে লাগানো বিশেষ এ উলকি ব্যবহূত হতে পারে। মটোরোলার গবেষকেদের তৈরি বিশেষ এ উলকি ত্বকের ওপর আঁঁঁকা এক ধরনের সার্কিটের মতো। এতে কোনো ব্যাটারির প্রয়োজন পড়ে না। স্মার্টফোনের সঙ্গে থাকা বিশেষ উলকি শনাক্তকরণ প্রযুক্তি এ উলকি শনাক্ত করতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় অনুষ্ঠিত ডি১১ সম্মেলনে মটোরোলার প্রধান নির্বাহী ডেনিস উডসাইড জানিয়েছিলেন, স্মার্টফোন ব্যবহারকারীকে পাসওয়ার্ড মনে রাখার ঝামেলা থেকে মুক্ত রাখতে বিশেষ ট্যাটু ও বিশেষ ধরনের পিল নিয়ে কাজ করছে মটোরোলা। উলকি ব্যবহারকারীর শরীরের কাছে স্মার্টফোনটি নিয়ে গেলেই ব্যবহারকারীকে শনাক্ত করতে পারবে মটোরোলা তৈরি স্মার্টফোন। ম্যাসাচুসেটস-ভিত্তিক প্রযুক্তি উদ্ভাবক প্রতিষ্ঠান ‘এমসি১০’ বিশেষ ধরনের এ উলকি উদ্ভাবন করেছে। ফিনল্যান্ডের মুঠোফোন নির্মাতা নকিয়াও এ ধরনের ইলেকট্রনিক উলকি প্রযুক্তিটি নিয়ে কাজ করছে। ইলেকট্রনিক উলকির পাশাপাশি বিশেষ ধরনের ইলেকট্রনিক পিল বা বড়ি তৈরিতেও কাজ করছে মটোরোলা। এ পিলটি খেলে মানুষের শরীর থেকে বিশেষ তরঙ্গ নির্গত হবে যা শনাক্ত করতে পারবে স্মার্টফোন। এ পিল শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হবে না। গবেষকেরা জানিয়েছেন ‘ই-ট্যাটু’ ও ‘পিল’ প্রযুক্তি এখনও উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। পাসওয়ার্ডের বিকল্প বায়োমেট্রিক পদ্ধতি মোবাইল ফোনের জন্য পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা নিয়ে চলছে নানা গবেষণা। স্মার্টফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের পণ্যের নিরাপত্তার খাতিরে পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা উন্নত করতে কাজ করছে। প্রচলিত সংখ্যা পদ্ধতির পাসওয়ার্ড ব্যবস্থার বিকল্প হিসেবে গবেষকেরা ফিঙ্গারপ্রিন্ট বা আঙুলের ছাপকে স্মার্টফোনের পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করতে কাজ করছেন। অ্যাপল, গুগল, স্যামসাংয়ের মত প্রতিষ্ঠানগুলো বায়োমেট্রিক পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা নিয়ে কাজ করছে। ধারণা করা হচ্ছে, অ্যাপল কর্তৃপক্ষ নতুন পাসওয়ার্ড ব্যবস্থাযুক্ত একটি আইফোন বাজারে আনবে যা ব্যবহারকারীর ফিঙ্গারপ্রিন্ট শনাক্ত করতে পারবে। স্মার্টফোনে ফিঙ্গারপ্রিন্ট প্রযুক্তি আনতে ২০১২ সালে অথেনটেক নামের একটি প্রতিষ্ঠান কিনেছে অ্যাপল। আইফোন ৫এস-এ এই প্রযুক্তিটি যুক্ত করতে পারে অ্যাপল। অন্যান্য প্রতিষ্ঠানগুলো এখন চোখের আইরিশ স্ক্যান ও কণ্ঠস্বর শনাক্তকরণ প্রযুক্তিকে পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা হিসেবে পরিচিত করতে কাজ করছে। ১৪ মার্চ নিউইয়র্কে স্যামসাংয়ের ঘোষণা দেওয়া গ্যালাক্সি এস ৪ স্মার্টফোনটিতে ফেস রিকগনিশন প্রযুক্তিটি আরও উন্নত করা হয়েছে যা স্মার্টফোনের পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। কণ্ঠস্বর শনাক্তকারী প্রযুক্তিটি নিয়ে অ্যাপল ও স্যামসাং নিজ নিজ গবেষণা আরও উন্নত করছে বলে জানা গেছে। পাসওয়ার্ড তালা-চাবি অনেকের জন্যই একাধিক পাসওয়ার্ড মনে রাখার বিষয়টি কষ্টের। আবার পাসওয়ার্ড জটিল হওয়াটা দরকারী। এ কষ্ট লাঘব করতে পাসওয়ার্ডের বিকল্প নিয়ে মাথা ঘামিয়েছে বিশ্বের শীর্ষ অনুসন্ধান সেবাদাতা প্রতিষ্ঠান গুগল। গুগল উদ্ভাবিত নতুন পদ্ধতিতে ইউএসবি কি বা চাবি, মুঠোফোন এমনকি গয়না বা অলংকারের মতো বস্তুগুলোকেও কম্পিউটারের পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করা যাবে। যে কোনো ইউএসবি ড্রাইভের সঙ্গে এই কি বা চাবি জুড়ে দেওয়া যাবে এবং পাসওয়ার্ডের বিকল্প হিসেবে তা ব্যবহার করা যাবে। ডেস্কটপ বা ল্যাপটপে এ ইউএসবি চাবিটি জুড়ে দিলেই তা পাসওয়ার্ড হিসেবে কাজ করবে। ইউএসবি চাবিটি পড়ে গেলে বা পানিতে ডুবিয়ে রাখলেও এর কোনো ক্ষতি হবে না। পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা উন্নত হলে ওয়েবসাইট, স্মার্টফোন অ্যাপ্লিকেশনেও তা ব্যবহার করা যাবে বলেও নির্মাতারা আশা করছেন। ফিডো পাসওয়ার্ড সুরক্ষায় এবং প্রচলিত পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা বিকল্প ব্যবস্থা তৈরিতে পেপল, গুগল ও কম্পিউটার নির্মাতা লেনোভো মিলে ‘ফাস্ট আইডেনটিটি অনলাইন’ বা ফিডো নামের একটি জোট তৈরি করেছে। প্রচলিত পাসওয়ার্ডের ওপর নির্ভরতা কমাতে কাজ করছে এ জোট। ফিডো থেকে নতুন যে পাসওয়ার্ড ব্যবস্থা আসবে তা এখনও উন্নয়নের পর্যায়ে রয়েছে। পাসওয়ার্ড সতর্কতা অ্যাকাউন্ট খোলার সময় অনেকেই কী পাসওয়ার্ড দেওয়া যায়, তা নিয়ে মহা দুশ্চিন্তায় পড়েন। কম্পিউটার নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, পাসওয়ার্ড যত দীর্ঘ হবে, ব্যবহারকারীর মনে রাখা তত সহজ হবে এবং হ্যাকার বা পাসওয়ার্ড-চোরদের জন্য তা অনুমান করা কঠিন হবে। পাসওয়ার্ড হিসেবে হয়তো কেউ বসান মোবাইল নম্বর, কেউ লেখেন আইলাভইউ আবার কেউ বা বসান জন্মদিনের সংখ্যা। কেউ ব্যবহার করেন ‘পাসওয়ার্ড’ শব্দটিকেই আবার কেউ লেখেন ১২৩৪৫৬। পাসওয়ার্ড দিতে হবে বলেই যে কেবল একটি মাত্র শব্দ বা কয়েকটি সহজ সংখ্যা বসিয়েই দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি মিলবে ভাবছেন, তাহলে কিন্তু ভুল করবেন। সম্ভব হলে কয়েকটি শব্দ ব্যবহার করে একটি বাক্যাংশ বা একটি পুরো বাক্যকেই পাসওয়ার্ড হিসেবে ব্যবহার করুন। কম্পিউটার নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠান সফোসের নিরাপত্তা বিশ্লেষক গ্রাহাম ক্লুলেই জানিয়েছেন, আপনার স্মরণীয় কোনো বাক্যের সঙ্গে ছোট-বড় অক্ষর, সংখ্যা ও চিহ্ন মিলিয়ে জটিল একটি পাসওয়ার্ড তৈরি করতে পারেন। পাসওয়ার্ডটি মুখস্থ রাখুন। পাসওয়ার্ড যত দীর্ঘ হবে, ততই নিরাপদ থাকবে আপনার অ্যাকাউন্ট। পাসওয়ার্ড নিয়ে পরামর্শ ১. দীর্ঘ বাক্যে পাসওয়ার্ড তৈরির বিষয়টি অনেক সহজভাবে করা সম্ভব। এটা সহজ কোনো বাক্যের অংশবিশেষ বা পুরো বাক্যটি হতে পারে। তবে এ ক্ষেত্রে বাক্যের পরিবর্তে আপনি সংখ্যা ব্যবহার করতে পারেন। আপনাকে খেয়াল রাখতে হবে যেভাবে পাসওয়ার্ডটি তৈরি করবেন তা যেন সহজে মনে থাকে কিন্তু অন্য কেউ সহজে তা অনুমান করতে না পারে। ২. যেখানে সেখানে পাসওয়ার্ড দেবেন না বা অপরিচিত ওয়েবসাইটে অ্যাকাউন্ট খুলবেন না। ৩. সব ওয়েবসাইটে একই পাসওয়ার্ড ব্যবহার করবেন না। ৪. দীর্ঘ বাক্যে জটিল পাসওয়ার্ড ব্যবহার করুন। ৫. পাসওয়ার্ড নিয়মিত হালনাগাদ করুন। ৬. কম্পিউটার, সামাজিক যোগাযোগের ওয়েবসাইট ও আর্থিক লেনদেনের সময় পাসওয়ার্ড দেওয়ার বিষয়ে সতর্ক থাকুন। অ্যাকাউন্ট লগআউট ঠিকমতো হয়েছে কি না, পরীক্ষা করুন। সাইবার-ক্যাফেতে ইন্টারনেট ব্রাউজিংয়ের সময় পাসওয়ার্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে সতর্ক থাকুন। ৭. পাসওয়ার্ড মূল্যবান তথ্য প্রতিরক্ষা করে। এটা আপনার ডিজিটাল সম্পদ। আপনার পাসওয়ার্ড রক্ষার জন্য সচেতন থাকুন। সব ক্ষেত্রেই গুরুত্ব দিয়ে পাসওয়ার্ড নির্বাচন করুন। মনে রাখুন এবং সুরক্ষিত স্থানে সংরক্ষণ করে রাখুন। |
কম্পিউটার মাউসের উদ্ভাবক ডগলাস অ্যাঙ্গেলবার্ট ২ জুলাই ৮৮ বছর বয়সে নিজ বাড়িতে বার্ধক্যের কারণে মারা গেছেন। তাঁর মেয়ে ক্রিস্টিনা এক ই-মেইল বার্তায় অ্যাঙ্গেলবার্টের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি। অ্যাঙ্গেলবার্ট ১৯২৫ সালের ৩০ জানুয়ারি যুক্তরাষ্ট্রের ওরিগন রাজ্যের পোর্টল্যান্ডে জন্মগ্রহণ করেন। তিনি ওরিগন স্টেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ইলেকট্রিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং বিষয়ে পড়াশোনা করেন। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় তিনি একজন রাডার টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করেন। ১৯৬৩ সালে কম্পিউটারের জন্য বিশ্বের প্রথম মাউসটি তৈরি করেন অ্যাঙ্গেলবার্ট। স্ট্যানফোর্ড রিসার্চ ইনস্টিটিউটে এটি তৈরি করেন তিনি। প্রথম সেই মাউসটির আকার আজকের পরিচিত মাউসের মতো ছিল না। বরং এটি তৈরি করা হয়েছিল একটি বক্সের মধ্যে। আর এর সঙ্গে ছিল কোনো তলে কাজ করার জন্য বিশেষ চাকা। আকারেও এটি ছিল বর্তমান মাউসগুলোর তুলনায় বেশ খানিকটা বড়। |
গুগলের মোবাইল অপারেটিং সিস্টেম অ্যান্ড্রয়েডের বড় ধরনের ত্রুটির খোঁজ পেয়েছেন বলে দাবি করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রযুক্তি নিরাপত্তা গবেষণা প্রতিষ্ঠান ব্লুবক্সের গবেষকেরা। গবেষকেরা বলছেন, অ্যান্ড্রয়েডের দুর্বলতা বা বাগ হিসেবে একটি ‘মাস্টার কী’-এর খোঁজ পেয়েছেন তাঁরা। এ সফটওয়্যার ত্রুটির কারণে সাইবার অপরাধীরা অ্যান্ড্রয়েড স্মার্টফোন থেকে তথ্য চুরি করতে পারে। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন। গবেষকেদের দাবি, অ্যান্ড্রয়েড সফটওয়্যারের এই ত্রুটি ২০০৯ সালের পর থেকে উন্মুক্ত সব সংস্করণেই রয়েছে। ক্রিপটোগ্রাফিক ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার দুর্বলতার কারণেই অ্যান্ড্রয়েডে অতিরিক্ত ম্যালওয়্যারের আক্রমণ দেখা যায়। ক্রিপটোগ্রাফিক ভেরিফিকেশন প্রক্রিয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন পরীক্ষা করে দেখা হয়। চলতি বছরের আগস্ট মাসে অনুষ্ঠিতব্য ব্ল্যাক হ্যাক হ্যাকারস সম্মেলনে অ্যান্ড্রয়েডের এ ত্রুটির বিস্তারিত জানানোর কথা জানিয়েছেন গবেষকেরা। অ্যান্ড্রয়েডের সফটওয়্যার ত্রুটির বিষয়ে গুগল কর্তৃপক্ষ আনুষ্ঠানিকভাবে কোনো মন্তব্য করেনি। |
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে জিএসপি-সুবিধা বন্ধ হওয়া প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহীউদ্দীন খান আলমগীর বলেছেন, জিএসপি-সুবিধা বন্ধ হওয়াতে বাংলাদেশের তেমন কোনো ক্ষতি হবে না। আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণ উপজেলায় নবগঠিত নারায়ণপুর পৌরসভার কার্যক্রম উদ্বোধন করতে গিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মন্ত্রী এ কথা বলেন। ‘ওয়াশিংটন টাইমস’-এ বিরোধীদলীয় নেতা ও বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার লেখা নিবন্ধ প্রসঙ্গে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘বাংলাদেশ সম্পর্কে তিনি (খালেদা) দুষ্টু কথা বলেছেন। কোনো নেত্রী যদি দেশের উন্নয়ন বা মঙ্গল চান, তাহলে এ ধরনের কথা বলতে পারেন না। নিন্দাসূচক কথা বলে তিনি দেশের অমঙ্গল করেছেন।’ কিশোরগঞ্জে আওয়ামী লীগ প্রার্থীর বিজয় প্রসঙ্গে মন্ত্রী বলেন, নৌকা প্রতীকে ভোট হলেই আওয়ামী লীগের প্রার্থী বিপুল ভোটে নির্বাচিত হন। কিশোরগঞ্জের উপনির্বাচনই তার প্রমাণ। তিনি বলেন, ‘আমরা নির্বাচনে হস্তক্ষেপ করিনি, তাই চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে গণতন্ত্রের বিজয় হয়েছে। কাজেই চার সিটি নির্বাচনে আমাদের যে পরাজয়ের কথা বলা হয়েছে, তাতে আমরা পরাজিত হইনি।’ নারায়ণপুর পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি বজলুর রশিদ মজুমদারের সভাপতিত্বে বক্তব্য দেন চাঁদপুর-২ আসনের সাংসদ এম রফিকুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগের নেতা নির্মল গোস্বামী, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শামসুল হক ভূঁইয়া, সাধারণ সম্পাদক আবু নঈম পাটওয়ারী দুলাল, মতলব দক্ষিণ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এইচ এম গিয়াস উদ্দিন প্রমুখ।এর আগে মন্ত্রী নারায়ণপুর ডিগ্রি কলেজের আইসিটি ল্যাব ও বৃক্ষরোপণ কর্মসূচি, বিদ্যুত্ সরবরাহ লাইনের উদ্বোধন এবং কলেজ মাঠে আয়োজিত জনসভায় বক্তব্য দেন। |
১১টি বিমা কোম্পানিকে লাইসেন্সের অনুমোদন দিয়েছে বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আরডিআরএ)। আজ বৃহস্পতিবার এই লাইসেন্সগুলো দিয়ে সংশ্লিষ্ট কোম্পানির কাছে চিঠি পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে।যেসব কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো সোনালী লাইফ ইন্স্যুরেন্স, গার্ডিয়াল লাইফ, চার্টাড লাইফ, তাইয়ো সামিট লাইফ, এনআরবি গ্লোবাল লাইফ, দেশ লাইফ, জেনিথ লাইফ, মার্কেন্টাইল ইসলামি লাইফ, প্রটেকটিভ লাইফ। এ ছাড়া আরও যে দুটি বিমা কোম্পানিকে লাইসেন্স দেওয়া হয়েছে সেগুলো হলো, নন লাইফ সিকদার ইন্স্যুরেন্স, সেনা কল্যাণ ইন্স্যুরেন্স। |
ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সিলেটে সিএনজি স্টেশনের এক মালিক লাঞ্ছিত ও হয়রানির শিকার হওয়ার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিএনজি স্টেশন মালিক সমিতির জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।সিএনজি স্টেশন মালিক সমিতির মহাসচিব সাজেদুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলো ডটকমের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সিলেটে আমাদের সহকর্মী এক সিএনজি স্টেশন মালিককে ওই ম্যাজিস্ট্রেট লাঞ্ছিত ও হয়রানি করেছেন। তাঁর স্টেশনে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তাঁর প্রতি একাত্মতা জানাতে আমরা সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের আহ্বান করেছি।’ |
একক-মিশ্র অ্যালবামে অনেক গানই করেছেন বাপ্পা মজুমদার ও মমতাজ। পাশাপাশি গেয়েছেন চলচ্চিত্রের গানও। সবগুলো গানই প্রকাশিত হয়েছে অডিও সিডি ও ভিসিডি আকারে। এবারই প্রথম একটি চলচ্চিত্রের সবগুলো গানের সংগীত পরিচালনা করলেন বাপ্পা মজুমদার। হাসিবুর রেজা কল্লোলের পরিচালনায় ছবিটির নাম ‘সত্তা’। আর এ ছবিটিতে বাপ্পার সুর ও সংগীত পরিচালনায় মমতাজের গাওয়া গানটি ডিজিটালি প্রকাশ করা হয়েছে। এটি বাপ্পার সুরে গাওয়া মমতাজের প্রথম কোনো গান। ১ জুলাই থেকে ছবিটির গানটি মাশরুম এন্টারটেইনমেন্টের ব্যানারে (http://bappamazumder.bandcamp.com) এ ওয়েবসাইটে প্রকাশিত হয়েছে।ডিজিটালি গান প্রকাশ করার কারণ প্রসঙ্গে বাপ্পা মজুমদার প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘অডিও সিডিতে এখন বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পাইরেসির দোহাই দেওয়া হয়। ডিজিটালি গান প্রকাশের ভাবনাটা আমাদের দেশে নতুন হলেও কিন্তু খুব দ্রুত জনপ্রিয়তা পাচ্ছে। আর তাই ডিজিটাল গান প্রকাশের সিদ্ধান্তটা নিতে হয়েছে। ডিজিটালি গান প্রকাশের এই ভাবনাটাকে সবাই বেশ স্বাগত জানিয়েছে। গত কয়েক দিনে ফেসবুকসহ নানা মাধ্যমে গানটি শুনে সবার যে মন্তব্য জানাতে পারছি, তাতে আমি মুগ্ধ।’বাপ্পা এও জানান, কয়েক বছর ধরে অডিও অ্যালবামের গান ডিজিটালি প্রকাশ করা হলেও চলচ্চিত্রের গান এবারই প্রথম প্রকাশিত হয়েছে। আপাতত একটি গান প্রকাশ করা হলেও পরবর্তী সময়ে ছবিটির অন্য সব গানও ডিজিটালি প্রকাশ করা হবে। ‘সত্তা’ ছবির গান ওয়েবসাইটে প্রকাশ প্রসঙ্গে পরিচালক হাসিবুর রেজা কল্লোল বলেন, ‘ছবিটির অডিও অংশের পুরো বিষয়টির পরিকল্পনায় আছেন বাপ্পা মজুমদার। তাঁর কাছে “সত্তা” ছবির গানটি ডিজিটালি প্রকাশের ভাবনাটা শুনে আমারও ভালো লাগে। গত কয়েক দিনে গানটির যে পরিমাণ সাড়া পাচ্ছি তাতে অভিভূত। মনে হচ্ছে বাপ্পা মজুমদার সময়োপযোগী সিদ্ধান্তই নিয়েছেন।’ রেইনড্রপ মিডিয়া লিমিটেডের ব্যানারে নির্মিত ‘সত্তা’ ছবির শুটিং ঈদের পরই শুরু হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানালেন পরিচালক। ছবিটিতে দেশের ও দেশের বাইরের অভিনয়শিল্পীদের কাজ করার কথা রয়েছে। ‘সত্তা’ ছবির অন্য গানগুলোতে কণ্ঠ দিয়েছেন সামিনা চৌধুরী, কনা, মিলা, আনুশেহ, পান্থ কানাই ও রানা। আর গানগুলোর কথা লিখেছেন হাসিবুর রেজা কল্লোল, শাহান কবন্ধ ও রানা। এদিকে, সম্প্রতি বাপ্পা অটিস্টিক বাচ্চাদের জন্য একটি গান তৈরি করেছেন। বাপ্পার সুর ও সংগীতায়োজনে গানটিতে কণ্ঠ দিয়েছেন পাঁচজন শিশুশিল্পী। এ ছাড়া বাপ্পা এখন ‘বেস্ট অব বাপ্পা মজুমদার’ অ্যালবামের গান তৈরির কাজ নিয়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন। ‘বেস্ট অব বাপ্পা মজুমদার’ অ্যালবামে বিভিন্ন সময়ে বাপ্পার প্রকাশিত একক অ্যালবামের গানগুলো স্থান পাবে বলে জানা গেছে। থাকবে একটি নতুন গান এবং একটি গানের ইন্সট্রুমন্টাল ভার্সন। মমতাজ-বাপ্পার অডিও গানটি শুনতে ক্লিককরুন |
বিচ্ছেদের এক বছর পরও কেটি হোমসকে ভুলতে পারছেন না ‘মিশন ইমপসিবল’ তারকা টম ক্রুজ। আর তাই তো সম্প্রতি তিনি সাবেক স্ত্রীকে আবেগঘন এক চিঠি লিখেছেন পুনর্মিলনের আশাবাদ ব্যক্ত করে।এ প্রসঙ্গে ঘনিষ্ঠ সূত্রের বরাতে কনট্যাক্টমিউজিক জানিয়েছে, কেটির বিচ্ছেদের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে গত বছরের জুলাইয়ে পাঁচ বছরের দাম্পত্যের ইতি টানার চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন কেটি ও ক্রুজ। দেখতে দেখতে বছর ঘুরে আবার জুলাই মাস এসে গেছে। কেটিকে কোনোভাবেই মন থেকে মুছে ফেলতে পারছেন না ক্রুজ। তিনি উপলব্ধি করেছেন, আজীবন কেটিকে ভালোবেসে যাওয়া ছাড়া তাঁর সামনে আর কোনো পথ খোলা নেই।হঠাৎ করেই গত বছর ক্রুজের ৫০তম জন্মদিনের কয়েকদিন আগে তাঁকে ছেড়ে চলে যান কেটি। ওই ঘটনায় কেবল ক্রুজই অবাক হননি, অবাক হয়েছিল পুরো বিশ্ব। শুরুতে কেটির ওপর ক্ষুব্ধ হলেও দিনের পর দিন ক্রুজ ভেবেছেন কেন তাঁকে ছেড়ে চলে গেলেন কেটি। শেষ পর্যন্ত কেটির সেই কঠিন সিদ্ধান্ত নেওয়ার পেছনের কারণ অনুধাবন করতে পেরেছেন ক্রুজ।কেটির ওপর থেকে রাগ ও অভিমান পুরোপুরি সরাতে দীর্ঘ সময় লেগেছে ক্রুজের। গত মার্চে তাঁদের পুনর্মিলনের চেষ্টা করেছিলেন মধ্যস্থতাকারীরা। কিন্তু কোনো লাভ হয়নি। সেই থেকে কথা বন্ধ রয়েছে সাবেক এ তারকা দম্পতির মধ্যে।কিন্তু ক্রুজ যেকোনো উপায়ে কেটিকে ফিরে পাওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। কেটি তাঁর জীবনে ফিরে না এলেও অন্তত বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক বজায় রাখবেন—এমনটাই প্রত্যাশা তাঁর। একমাত্র মেয়ে সাত বছর বয়সী সুরির মুখের দিকে তাকিয়ে সব ভুলে আবার ফিরে আশার কথা জানিয়েই সম্প্রতি কেটিকে চিঠি লিখেছেন ক্রুজ। |
বিগহার্ট লাভার বয়’ সালমান খানের টানে নিজ দেশ ছেড়ে ভারতে এসেছেন রোমানীয় টিভি তারকা ইলুলিয়া ভেঞ্চুর। কয়েক মাস ধরে ভারতে অবস্থান করছেন স্বর্ণকেশী এ সুন্দরী। সম্প্রতি এক খবরে ‘মিড-ডে’ জানিয়েছে, বান্দ্রার কার্টার রোডের একটি অ্যাপার্টমেন্টে ইলুলিয়ার থাকার ব্যবস্থা করেছেন সালমান।মুম্বাইয়ের গ্যালাক্সি হাইটস অ্যাপার্টমেন্টে মা-বাবার সঙ্গে বসবাস করতেন সালমান। মাস তিনেক আগে অ্যাপার্টমেন্টটির সংস্কারকাজ শুরু হওয়ার পর বান্দ্রার কার্টার রোডের অ্যাপার্টমেন্টে মা-বাবার সঙ্গে থাকা শুরু করেন সালমান। সম্প্রতি তিনি একই অ্যাপার্টমেন্টে ইলুলিয়ার থাকার ব্যবস্থা করেছেন।এখন পর্যন্ত বেশ কয়েকজন সহ-অভিনেত্রী ও বিদেশিনির প্রেমে মজে খবরের শিরোনাম হয়েছেন সালমান খান। তাঁর প্রেমিকার দীর্ঘ তালিকায় সর্বশেষ সংযোজন রোমানিয়ার প্রতিষ্ঠিত টিভি সঞ্চালক ও অভিনেত্রী ইলুলিয়া ভেঞ্চুর।বরাবরই সালমান তাঁর প্রেমিকাদের নানা সুযোগ-সুবিধা দিয়ে এসেছেন। প্রভাবশালী এ তারকার হাত ধরেই বলিউডে প্রতিষ্ঠা পেয়েছেন তাঁর সাবেক প্রেমিকা ক্যাটরিনা কাইফ। মুম্বাইয়ের খার এলাকায় অবস্থিত এক বাড়িতে ক্যাটরিনার থাকার ব্যবস্থা করে দিয়েছিলেন খান সাহেব। আর এবার নিজের বাড়িতেই ইলুলিয়ার থাকার ব্যবস্থা করলেন তিনি। বছর দুয়েক আগে একবার বিদেশ সফরে গিয়ে সালমানের সাক্ষাত্ হয়েছিল ইলুলিয়ার সঙ্গে। সেই থেকে তাঁরা পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন। ইলুলিয়ার সঙ্গে এক বছর আগেই অভিসার শুরু করেছিলেন সালমান। তবে যথেষ্ট গোপনীয়তা মেনে চলায় তাঁদের সেই অভিসারের খবর খুব কম মানুষই জানত। বলিউডের সবচেয়ে কাঙ্ক্ষিত ব্যাচেলরের তকমা হটিয়ে রোমানীয় টিভি তারকা ইলুলিয়া ভেঞ্চুরকে বিয়ে করতে যাচ্ছেন সালমান খান—গত মে মাসের শুরুর দিকে এমন খবরে হইচই পড়ে যায় চারদিকে। সালমান তাঁর নতুন এ প্রেমিকাকে নিয়ে বেশ সিরিয়াস। গোয়ায় ‘মেন্টাল’ ছবির শুটিংয়ের সময় তাঁকে সঙ্গ দেন স্বর্ণকেশী ইলুলিয়া। অনেকটা সময় তাঁরা একসঙ্গে কাটান। এ ছাড়া, সম্প্রতি একই ছবির শুটিংয়ের কাজে হায়দরাবাদ শহরে গিয়েছিলেন সালমান। তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন ইলুলিয়া। বিমান থেকে নেমে শুরুতে তাঁরা একসঙ্গেই হাঁটছিলেন। কিন্তু কিছুক্ষণ পর আলোকচিত্রীরা তাঁদের ছবি তোলার চেষ্টা করলে বিমানবন্দর থেকে আলাদাভাবে বের হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন সালমান। তিনি তাঁর জন্য অপেক্ষমাণ বিলাসবহুল গাড়িতে করে ইলুলিয়াকে স্থানীয় একটি হোটেলে পাঠিয়ে দেওয়ার ব্যবস্থা করেন। পরে তিনি ভাড়া করা ট্যাক্সি নিয়ে বিমানবন্দর ত্যাগ করেন। ইলুলিয়া প্রসঙ্গে সালমান মুখ না খুললেও তাঁর সঙ্গ যে ইলুলিয়া দারুণ উপভোগ করছেন তার প্রমাণ পাওয়া যায় গত মে মাসের শেষের দিকে। তখন বেতনের চার হাজার ইউরোর মায়া ত্যাগ করে দুই মাসের অবৈতনিক ছুটি চেয়ে রোমানিয়ার প্রো টিভি চ্যানেল বরাবর দরখাস্ত পাঠিয়েছিলেন ইলুলিয়া। তাঁকে টিভি তারকা হিসেবে ভারতে প্রতিষ্ঠিত করবেন বলেও কথা দিয়েছেন সালমান। সব মিলিয়ে সালমান-ইলুলিয়া প্রেম বেশ ভালোই জমে উঠেছে। তাঁদের এই প্রেম বিয়ে পর্যন্ত গড়ায় কি না, তা জানার জন্য সময় আর সালমানের মর্জির ওপর নির্ভর করা ছাড়া আপাতত আর কিছুই করার নেই সালমান-ভক্তদের। |
দুর্ঘটনায় আহত হলেন ছোটপর্দার জনপ্রিয় অভিনেতা সাঈদ বাবু। গতকাল বুধবার হরতালের সময় ধানমন্ডি থেকে উত্তরায় নাটকের শুটিংয়ে যাওয়ার পথে এ দুর্ঘটনায় পড়েন তিনি। এতে সাঈদ বাবুর শরীরের বিভিন্ন অংশে বেশ আঘাত পান।প্রথম আলো ডটকমকে সাঈদ বাবু বলেন, ‘পূর্বনির্ধারিত সময় অনুযায়ী, গতকাল বুধবার ফজলুর রহমানের পরিচালনায় ‘চুপিচুপি’ নাটকের শুটিংয়ের শিডিউল ছিল। নাটকটি এটিএন বাংলায় নিয়মিতভাবে প্রচারিত হয়ে আসছে। কিন্তু হঠাত্ করে হরতালের কারণে ইচ্ছে থাকা সত্ত্বেও কোনোভাবেই শুটিং শিডিউল পেছানো সম্ভব ছিল না। তাই বাধ্য হয়ে হরতালের মধ্যে শুটিংয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিতে হয়। আর হরতালের কারণে বাহন হিসেবে বেছে নিতে হয় সিএনজিচালিত অটোরিকশা। ধানমন্ডি থেকে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় করে উত্তরার পথে এয়ারপোর্ট এলাকা পার হওয়ার পর একজন মোটরসাইকেল আরোহীকে বাঁচাতে গিয়ে আমাকে বহনকারী সিএনজিচালিত অটোরিকশাটি উল্টে যায়। এতে আমার কোমর, হাত, পাসহ শরীরের বিভিন্ন অংশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়।’সাঈদ বাবু এও বলেন, ‘যে দুর্ঘটনা থেকে প্রাণে রক্ষা পেয়েছি, তা আসলে আল্লাহর রহমত ছাড়া বাঁচা সম্ভব নয়। শুনেছি এ ধরনের দুর্ঘটনায় গাড়িতে আগুন লেগে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে বেশি। সবকিছু মিলিয়ে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া, তিনি আমাকে বড় ধরনের বিপদ থেকে রক্ষা করেছেন।’ উল্লেখ্য, ‘খেলা খেলা সারাবেলা’ শিরোনামের নাটকে অভিনয়ের জন্য এবার মেরিল-প্রথম আলো সমালোচক পুরস্কারে মনোনয়ন পেয়েছেন। পুরস্কার না পেলেও আজাদ আবুল কালাম ও মোশাররফ করিমের সঙ্গে মনোনয়ন পাওয়ার ব্যাপারটিকে অনেক বড় করে দেখছেন এই অভিনেতা। |
নেইমার, নেইমার, নেইমার। এই মুহূর্তে এই ধ্বনিতেই উচ্চকিত ফুটবল বিশ্ব। একের পর এক যেন জাদু দেখিয়ে চলেছেন ব্রাজিলের বিস্ময়-বালক। সাফল্য যেন পোষ মানা বিড়ালের মতো ঘুরঘুর করছে তাঁর পায়ে। কনফেডারেশনস কাপে এতগুলো পুরস্কার জিতেছেন যে সেগুলোর ভার সামলাতেই রীতিমতো হিমশিম খেতে হয়েছে। গোল্ডেন বল, সিলভার বুট, তিনটি ম্যান অব দ্য ম্যাচের ট্রফি। এক আসর থেকে আর কি-ই বা চাওয়া থাকতে পারে ২১ বছর বয়সী স্ট্রাইকারের! দারুণ একটা সময় যে পার করছেন, সেটা অনুমানও করতে হচ্ছে না। কথাটা নিজের মুখেই বলেছেন নেইমার।কনফেডারেশনস কাপে নেইমারের দু-একটি গোল ফুটবলপ্রেমীদের মনে গেঁথে গেছে বেশ ভালোভাবেই। গত পরশু তাঁর আরও একটি গোল হতবাক করে দিয়েছে ফুটবলবিশ্বকে। মেসি ফাউন্ডেশন আয়োজিত এক দাতব্য ম্যাচে ৪৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শটে বল জড়িয়েছেন প্রতিপক্ষের জালে। পেরুর লিমায় অনুষ্ঠিত এই ম্যাচ শেষেই নেইমার জানিয়েছেন সাম্প্রতিক সময়ের সাফল্যগুলো নিয়ে তাঁর অনুভূতির কথা, ‘নিজেদের মাটিতে কনফেডারেশনস কাপ জিততে পেরে আমি খুবই সন্তুষ্ট। আর এই মুহূর্তে ক্যারিয়ারের সেরা একটা সময়ই আমি পার করছি।’মাত্র ১৭ বছর বয়সে সান্তোসের জার্সি গায়ে পেশাদারি ফুটবল অঙ্গনে পা রেখেছিলেন নেইমার। প্রতিভার বিচ্ছুরণ ঘটিয়ে বিশ্বের সেরা ক্লাবগুলোর নজরও কেড়েছিলেন খুব অল্প সময়ের মধ্যে। তাঁকে নিয়ে বাড়াবাড়িটা যে মোটেই অমূলক ছিল না, সেটার প্রমাণ প্রতিনিয়তই রেখে চলেছেন। ইউরোপিয়ান ফুটবলের আগামী মৌসুমে তাই মেসি-নেইমারের যুগলবন্দি দেখার জন্য অধীর আগ্রহেই অপেক্ষা করছে ফুটবলবিশ্ব।আগামী ২১ আগস্ট অ্যাটলেটিকো মাদ্রিদের বিপক্ষে ম্যাচটিতেই বার্সেলোনার জার্সি গায়ে আনুষ্ঠানিক অভিষেক হতে যাচ্ছে নেইমারের। |
ম্যাজিস্ট্রেটের মাধ্যমে সিলেটে সিএনজি স্টেশনের এক মালিক লাঞ্ছিত ও হয়রানির শিকার হওয়ার প্রতিবাদে আগামীকাল শুক্রবার সকাল ছয়টা থেকে সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধর্মঘট ডাকা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সিএনজি স্টেশন মালিক সমিতির জরুরি বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।সিএনজি স্টেশন মালিক সমিতির মহাসচিব সাজেদুল ইসলাম চৌধুরী প্রথম আলো ডটকমের কাছে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘সিলেটে আমাদের সহকর্মী এক সিএনজি স্টেশন মালিককে ওই ম্যাজিস্ট্রেট লাঞ্ছিত ও হয়রানি করেছেন। তাঁর স্টেশনে ঢুকে ভাঙচুর চালানো হয়েছে। তাঁর প্রতি একাত্মতা জানাতে আমরা সারা দেশে অনির্দিষ্টকালের ধর্মঘটের আহ্বান করেছি।’ |
মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা অধিদপ্তরের অধীন কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে যে অভিযোগ উঠেছে, তা খতিয়ে দেখতে একটি তদন্ত কমিটি করেছে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব ইকবাল খান চৌধুরীর নেতৃত্বে গঠিত তিন সদস্যের কমিটিকে সাত দিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।প্রতিবেদন দেওয়ার আগ পর্যন্ত নিয়োগ কার্যক্রম স্থগিত থাকবে। শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা প্রথম আলো ডটকমকে এ তথ্য জানিয়ে বলেন, কমিটির বাকি দুজন সদস্য হলেন মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব কে এফ মাহমুদ ও উপসচিব শহীদুল ইসলাম।মাউশির অধীন দ্বিতীয় ও চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী নিয়োগপ্রক্রিয়া চলছে। এই নিয়োগে অনিয়মের অভিযোগ তুলে সম্প্রতি কয়েকটি পত্রিকায় প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। |
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফল নিজেদের পক্ষে নিতে সরকার ‘ভয়াবহ’ চেষ্টা চালাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।আজ বৃহস্পতিবার জাতীয় প্রেসক্লাবে এক আলোচনায় সভায় ফখরুল এই অভিযোগ করেন। জাসাস, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ‘তারেক রহমান-আগামীর বাংলাদেশ’ শীর্ষক ওই আলোচনা সভার আয়োজন করে।ফখরুল অভিযোগ করেন, চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের পর সরকারের ‘মাথা খারাপ’ হয়ে গেছে। এখন তারা মরিয়া হয়ে ওঠেছে। গাজীপুর দখলে নেওয়ার জন্য তারা উঠেপড়ে লেগেছে। প্রজাতন্ত্রের কর্মচারীদের ব্যবহার করে সরকার জনগণের রায় ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে।বিএনপির মুখপাত্রের অভিযোগ, আসন্ন গাজীপুর সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে ঢালাওভাবে দলীয় প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। নির্বাচনে দায়িত্ব পালনের জন্য একটি বিশেষ জেলার পুলিশ সদস্যদের আনা হচ্ছে। অর্থের খেলা হচ্ছে বিভিন্নভাবে।মির্জা ফখরুল দাবি করেন, একটি নামকরা বিদেশি সংস্থার জরিপে জনপ্রিয় হিসেবে দেশের তিনজন নেতার নাম উঠে এসেছে।তাঁরা হলেন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও বিএনপির সিনিয়র ভাইস চেয়ারম্যান তারেক রহমান।তারেক রহমান জনগণের হূদয়ে স্থান করে নিয়েছেন, এ কারণেই সরকার তাঁকে ভয় পায়।সভায় অন্যদের মধ্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য মনিরুজ্জামান মিঞা, সাবেক সহ-উপাচার্য আ ফ ম ইউসুফ হায়দার প্রমুখ বক্তব্য দেন। |
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিএনপির সেনা মোতায়েনের দাবি প্রসঙ্গে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের সদস্য তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, নির্বাচন কমিশন চাইলে সেনা মোতায়েন করতে পারে। তবে সেখানে সেনাবাহিনী মোতায়েনের মতো কোনো ধরনের অবস্থা বিরাজ করছে না। এমনকি ১৮ দল-সমর্থিত প্রার্থীও কোনো অনিয়মের অভিযোগ করেননি।আজ বৃহস্পতিবার তোফায়েল আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধিদল আগারগাঁওয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) কাজী রকিব উদ্দীন আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেন। সেখানে সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে তোফায়েল আহমেদ এ কথা বলেন।তোফায়েল বলেন, গাজীপুরে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ বিরাজ করছে। কিন্তু আগে থেকে বিএনপির কেন্দ্র থেকে অপপ্রচার চালিয়ে সেই পরিবেশ নষ্ট করা হচ্ছে বলে তিনি অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘যারা সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায়, তারা কীভাবে গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে সেনা চায়? সেনাবাহিনী অত্যন্ত দক্ষতা ও সুনামের সঙ্গে দেশ-বিদেশে কাজ করছে। সর্বশেষ রানা প্লাজার ঘটনাও তারা মোকাবিলা করেছে। এই সেনাবাহিনী ১৭ দিন পর রেশমাকে উদ্ধার করেছে। অথচ সত্যতা যাচাই না করে তারা (বিএনপি) এখন সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালাচ্ছে।’সাংবাদিকদের অপর এক প্রশ্নের জবাবে আওয়ামী লীগের উপদেষ্টা পরিষদের ওই সদস্য আরও বলেন, ‘গাজীপুরে ধর্মের অপব্যবহার হচ্ছে। ধর্মের যেন অপব্যবহার না হয়, সে জন্য নির্বাচন কমিশনকে আহ্বান জানাতে আমরা সেখানে গিয়েছিলাম।’এ সময় তোফায়েলের সঙ্গে ছিলেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, সাংগঠনিক সম্পাদক বাহাউদ্দিন নাছিম, উপ-দপ্তর সম্পাদক মৃণাল কান্তি দাস প্রমুখ। |
থাইল্যান্ডের ফুকেটের কাছে আন্দামান সাগরে এমএইচ হোপ নামের বাংলাদেশের একটি কার্গো জাহাজ ডুবে যাওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ন্যাশনাল নিউজ ব্যুরো অব থাইল্যান্ডে প্রকাশিত খবরে রয়্যাল থাই নেভি জানায়, জাহাজটিতে ১০ জন বাংলাদেশি নাবিক ছিলেন। আজ বৃহস্পতিবার ঝড়ের কবলে পড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।নাভাল সিভিল অ্যাফেয়ার্সের ক্যাপ্টেন থামাওয়াত মারলাইসুকারিন বলেন, জাহাজটিতে উদ্ধারকাজ চলছে। শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত ১৯ জন নাবিককে উদ্ধার করা হয়েছে। তবে ১০ জন বাংলাদেশি এখনও নিখোঁজ রয়েছে।এমএইচ হোপ নামে ওই জাহাজটি চট্টগ্রাম বন্দরের উদ্দেশে রওনা হয়েছিল। আন্দামান সাগরে থাইল্যান্ডের ফুকেটের কাছে পৌঁছে ঝড়ের কবলে পড়ে জাহাজটি। এ সময় সাগর ছিল খুবই উত্তাল। সাগরে ঢেউয়ের উচ্চতা ছিল ৪ মিটার। থাইল্যান্ডের নৌবাহিনী উদ্ধারকাজ চালিয়ে যাচ্ছে বলে জানা গেছে। |
ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের (বসুন্ধরা শাখার) এক ছাত্রীকে নির্যাতনের মামলায় শিক্ষক পরিমল জয়ধরের বিরুদ্ধে আরও একজন সাক্ষ্য দিয়েছেন।আজ বৃহস্পতিবার নির্যাতিতা ছাত্রীর মা এ সাক্ষ্য দেন।সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে আগামী ২২ আগস্ট পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য দিন ধার্য করেছেন আদালত।ঢাকার নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-৪-এর বিচারক আরিফুর রহমান সাক্ষ্য গ্রহণ শেষে এ তারিখ গ্রহণ করেন।এ মামলায় এখন পর্যন্ত নিয়ে চারজন সাক্ষ্য দিলেন।ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের বসুন্ধরা শাখার এক ছাত্রীকে নির্যাতনের অভিযোগে ২০১১ সালের ৬ জুলাই শিক্ষক পরিমল জয়ধরকে গ্রেপ্তার করা হয়। |
কনফেডারেশনস কাপের শিরোপা জয়টা নতুন করে স্বপ্ন দেখাচ্ছে ব্রাজিলকে। ফাইনালে বিশ্বকাপজয়ী স্পেনকে ৩-০ গোলের বড় ব্যবধানে হারানোর পর এখন বিশ্বকাপ জয়ের স্বপ্নে বিভোর ব্রাজিলের সমর্থকেরা। ফুটবলে ব্রাজিলিয়ান উত্থানের প্রতিধ্বনি শোনা যাচ্ছে ফিফার র্যাঙ্কিংয়েও। পুরো এক বছর পর আবারও শীর্ষ দশে জায়গা করে নিয়েছে সেলেসাওরা। ২২ নম্বর থেকে বিশাল এক লাফ দিয়ে চলে এসেছে নয় নম্বরে।গত বছরের জুলাই থেকে শুরু হয়েছিল ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে ব্রাজিলের অবনমন। স্বাগতিক হওয়ার সুবাদে বিশ্বকাপ বাছাই পর্ব খেলতে হচ্ছে না ব্রাজিলকে। এ সময়টায় নিজেদের ঝালিয়ে নিতে প্রীতি ম্যাচ খেলেছে ব্রাজিল। প্রতিযোগিতামূলক ম্যাচ না খেলার কারণেই রেটিং পয়েন্ট কম ছিল ব্রাজিলের। গত বছরের জুলাইয়ে পঞ্চম অবস্থান থেকে তারা নেমে গিয়েছিল ১১ নম্বরে। তারপর যত দিন গেছে শুধু নিচের দিকেই নেমেছে পাঁচবারের বিশ্বকাপজয়ীরা। শেষ পর্যন্ত গত মাসে অবনমনের নতুন ‘রেকর্ড’ই গড়ে ফেলেছিল ব্রাজিল। স্থান হয়েছিল ২২ নম্বরে। ব্রাজিলের ফুটবল ইতিহাসেই প্রথমবারের মতো সেরা বিশের বাইরে ছিটকে গিয়েছিল তারা। এরপরই কনফেডারেশনস কাপে দারুণভাবে ফিরে আসে লুইস ফেলিপে স্কলারির দল। টানা পাঁচটি ম্যাচ অপরাজিত থেকে জিতে নিয়েছে কনফেডারেশনস কাপ শিরোপা। বিশ্বকাপের মহড়া প্রতিযোগিতার এই সাফল্যই আবার শীর্ষ দশে ফিরিয়ে এনেছে ব্রাজিলকে। ফাইনালে ব্রাজিলের কাছে হেরে কনফেডারেশনস কাপের শিরোপাটা অধরা থেকে গেলেও ফিফা র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষস্থানটা হারাতে হয়নি স্পেনকে। ১৫৩২ পয়েন্ট নিয়ে এখনো অন্যদের ধরাছোঁয়ার বাইরেই আছে লা রোজারা। দ্বিতীয় স্থানে থাকা জার্মানির সঙ্গে তাদের পয়েন্ট ব্যবধান ২৫৯। বিশ্বকাপ বাছাইপর্বে ভালো পারফরম্যান্স দেখানোর সুবাদে তৃতীয় স্থানে উঠে এসেছে কলম্বিয়া। চতুর্থ ও পঞ্চম স্থানে আছে যথাক্রমে আর্জেন্টিনা ও হল্যান্ড। সূত্র: রয়টার্স। |
আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অন্যবারের মতো এবারের রমজান মাসেও দেশজুড়ে বাড়তি নিরাপত্তা-ব্যবস্থা নিয়েছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। আজ বৃহস্পতিবার র্যাবের এক বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানানো হয়। রমজান মাসে আর্থিক লেনদেন বেড়ে যাওয়ায় ছিনতাই, চাঁদাবাজির মতো সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড রোধে এসব পদক্ষেপ নিয়েছে র্যাব। নিরাপত্তা পরিকল্পনার অংশ হিসেবে অন্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পাশাপাশি র্যাবও নিজস্ব দায়িত্বপূর্ণ এলাকায় তিন ধাপে বিশেষ ব্যবস্থা নেবে। বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, রমজান মাস উপলক্ষে ইফতার, তারাবির নামাজ এবং সেহরির সময় ডাকাতি ও ছিনতাই প্রতিরোধে বিশেষ নজরদারি ও আইন প্রয়োগের ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এ ছাড়া ব্যাংকসহ ব্যবসায়িক প্রতিষ্ঠানগুলোয় আর্থিক লেনদেন ও পরিবহনে ছিনতাই, ডাকাতি এবং অজ্ঞান পার্টি রোধে বিশেষ নজরদারি করা হবে। দেশের বড় শহরগুলোর গুরুত্বপূর্ণ স্থান ও সড়কে ভ্রাম্যমাণ তল্লাশি চৌকি বসিয়ে তল্লাশি চালানো হবে। এসব স্থানে মোটরসাইকেল নিয়ে ও হেঁটে র্যাবের দল টহল দেবে। র্যাবের পোশাকধারী সদস্যের পাশাপাশি সাদা পোশাকে গোয়েন্দা কার্যক্রম জোরদার করা হবে। এ ব্যাপারে র্যাবের গণমাধ্যম শাখার পরিচালক উইং কমান্ডার এ টি এম হাবিবুর রহমান প্রথম আলো ডটকমকে জানান, রমজান মাসে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে তাঁদের অভিযান আরও জোরদার করা হবে। ঈদে ঘরমুখো যাত্রী হয়রানি ও টিকিটের কালোবাজারি ঠেকাতে র্যাবের পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন উইং কমান্ডার হাবিবুর রহমান। এ ব্যাপারে তিনি বলেন, বাস, রেল, লঞ্চ কাউন্টার ও টার্মিনালগুলোয় ঈদের ঘরমুখো মানুষ যেন টিকিট কিনে প্রতারিত না হয়, এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
সাড়ে চার ঘণ্টা পর ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-সিলেট ও ঢাকা-নোয়াখালী রেলপথে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে।আজ বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর এলাকায় চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মালবাহী ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত ট্রেন চলাচল বন্ধ থাকে।এ ঘটনায় চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল রেলস্টেশনে আটকা পড়ে। কুমিল্লা রেলস্টেশনে আটকা পড়ে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন।কুমিল্লা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ হোসেন মজুমদার প্রথম আলো ডটকমকে জানান, আখাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন পাঠানো হয়েছে। মালবাহী ট্রেনটি সরিয়ে নেওয়ার পরে ট্রেন চলাচল শুরু হয়েছে। |
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) ছাত্র আরিফ রায়হান ওরফে দীপ হত্যার ঘটনার মামলায় ৩০২ ধারা সংযুক্ত করা হয়েছে। এখন থেকে এটি হত্যা চেষ্টা মামলার বদলে হত্যা মামলা হিসেবে বিবেচিত হবে।আজ বৃহস্পতিবার মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জসীম উদ্দীন দণ্ডবিধি ৩০২ ধারা সংযুক্ত করার আবেদন করলে মহানগর হাকিম আশিকুর রহমান তা মঞ্জুর করেন।আরিফের ওপর হামলার ঘটনায় চকবাজার থানায় তাঁর ভাই বাদী হয়ে একটি হত্যা চেষ্টা মামলা করেন। পুলিশ এ ঘটনায় বুয়েটের স্থাপত্য বিভাগের চতুর্থ বর্ষের ছাত্র মেজবাহকে আটক করে। এ মামলায় তাঁকে গ্রেপ্তার দেখিয়ে রিমান্ডে নেওয়া হয়। ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ জানায়, মেজবাহ স্বীকার করেন তিনি হেফাজতে ইসলামের সক্রিয় সমর্থক। গ্রেপ্তারের পর থেকে তিনি কারাগারে আছেন।নিহত আরিফ বুয়েটের নজরুল ইসলাম হলের একটি কক্ষে থাকতেন। গত ৯ এপ্রিল ওই হলের এক ছাত্র তাঁকে কুপিয়ে দ্রুত পালিয়ে যান। এর পর থেকে তিনি অচেতন অবস্থায় হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যাকেন্দ্রে চিকিত্সাধীন ছিলেন। গত মঙ্গলবার ভোরে রাজধানীর স্কয়ার হাসপাতালের চিকিত্সকেরা তাঁকে মৃত ঘোষণা করেন। আরিফ বুয়েটের যন্ত্রকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষে পড়তেন। তিনি বুয়েট শাখা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ছিলেন। |
দক্ষিণ আফ্রিকার বর্ণবাদবিরোধী নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাকে কৃত্রিম ব্যবস্থায় বাঁচিয়ে রাখা হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আল জাজিরা অনলাইনের প্রতিবেদনে জানানো হয়, মৃত্যুর পর ম্যান্ডেলাকে সমাহিত করা নিয়ে পরিবারের পক্ষ থেকে আদালতে দেওয়া নথিপত্র সূত্রে ম্যান্ডেলার এভাবে বেঁচে থাকার বিষয়টি জানা গেছে। তবে সরকারের পক্ষ থেকে এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করা হয়নি।ম্যান্ডেলার বড় মেয়ে ম্যাকাজিউয়ে গতকাল বুধবার আদালতকে জানান, তাঁর বাবার অবস্থা সংকটাপন্ন। জীবনরক্ষাকারী যন্ত্রের মাধ্যমে শ্বাস নিচ্ছেন তিনি।মৃত্যুর পর ম্যান্ডেলাকে কোথায় সমাহিত করা হবে, তা নিয়ে পরিবারের সদস্যদের মধ্যে বিরোধ চলছে। এমনকি এই বিরোধ আদালত পর্যন্ত গড়িয়েছে। সেখানে ম্যান্ডেলার স্ত্রী গ্রাকা ম্যাচেল, বড় মেয়ে ম্যাকাজিউয়ে ম্যান্ডেলা এবং আরও ১৪ জন আত্মীয় কিছু নথিপত্র জমা দিয়েছেন।ওই মামলায় অভিযোগ করা হয়, পারিবারিক বিরোধের জেরে নাতি মান্ডলা তাঁর বাবা ও ম্যান্ডেলার দুই মেয়ের দেহাবশেষ কুনু থেকে সরিয়ে এমজাভো গ্রামে নিয়ে আবার সমাহিত করেন।এদিকে চার সপ্তাহ ধরে হাসপাতালে চিকিত্সাধীন ম্যান্ডেলার ইচ্ছা তাঁকে যেন কুনু গ্রামেই সমাহিত করা হয়।মৃত্যুর পরও ম্যান্ডেলা যেন তাঁর সন্তানদের পাশে থাকতে পারেন, এমন যুক্তি দেখিয়ে মান্ডলার বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন তাঁর স্বজনেরা। মামলার রায়ে আদালত ম্যান্ডেলার ওই তিন সন্তানের দেহাবশেষ ফের কুনু গ্রামে সমাহিত করার নির্দেশ দেন। কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এ নির্দেশ পালন করা হয়। |
ভারতের ছত্তিশগড় ও ঝাড়খন্ড রাজ্যে মাওবাদীরা নতুন করে সংগঠিত হচ্ছে। কিশোর বা বালকদের নিয়ে মাওবাদীরা গঠন করেছে ‘বাল অ্যাকশন টিম’। ছত্তিশগড়ের নকশাল দমন শাখার অতিরিক্ত মহাপরিচালক আর কে ভিজ বলেছেন, জীবনের ঝুঁকি আছে, এমন কাজেও মাওবাদীরা বালক ও কিশোরদের ব্যবহার করছে।ছত্তিশগড়ের বস্তার জেলার বিভিন্ন স্কুলে মাওবাদীরা ছাত্রদের তাদের দলে ভিড়িয়ে নিয়েছে। অ্যাকশন টিমের এই বালকদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়েছে। বালক ও কিশোরেরা তথ্য সংগ্রহ, অভিযান কাজে অংশগ্রহণ এবং বার্তা বাহকের দায়িত্ব পালন করছে।মাওবাদীরা তাদের অধীনে থাকা বালসংঘ ও ছাত্রসংঘের সদস্যদের ‘বাল অ্যাকশন টিমে’ অন্তর্ভুক্ত করেছে। |
সাম্প্রতিক বছরগুলোতে ফুটবল-বিশ্ব শাসন করেছেন দুজন—লিওনেল মেসি ও ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো। এখন পর্যন্ত রাজমুকুটটা অবশ্য টানা চারবার ফিফা-ব্যালন ডি’অর জয়ী মেসির মাথায়। তবে তা শোভা পেতে পারত রোনালদোর মাথায়ও, যদি তাঁর জন্মটা ‘ভুল’ সময়ে না হতো; অর্থাত্, মেসি না থাকতেন। দৃশ্যপটে এখন অবশ্য শুধু মেসি আর রোনালদো নন, এসে গেছেন তৃতীয় একজন—নেইমার। রোনালদো-মেসির রাজত্বে ‘হুমকি’ হিসেবে দেখা হচ্ছে ২১ বছর বয়সী ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ডকে। ভাবনাটা যে অমূলক নয়, এরই মধ্যে তার প্রমাণও রেখেছেন নেইমার। সদ্যসমাপ্ত কনফেডারেশনস কাপে দুর্দান্ত খেলে ব্রাজিলকে শিরোপা উপহার দিয়েছেন। নিজে চারটি গোল করেছেন, সতীর্থদের কয়েকটি গোলে সহায়তাও করেছেন। জিতেছেন প্রতিযোগিতার সেরা খেলোয়াড়ের পুরস্কার ‘গোল্ডেন বল’। মেসি-রোনালদোর এই প্রবল দাপটের মধ্যে নেইমারের হুমকি হয়ে আবির্ভাব হওয়া নিয়ে তার পরও যাদের মনে ক্ষীণতম সন্দেহ ছিল, সেটাও নেইমার কর্পূরের মতো হাওয়া করে দিয়েছেন সর্বশেষ ম্যাচে। পরশু রাতে পেরুর লিমায় মেসি ফাউন্ডেশন আয়োজিত একটি দাতব্য ম্যাচে অবিশ্বাস্য এক গোল করেছেন নেইমার। প্রায় ৪৫ গজ দূর থেকে নেওয়া শটে করেছেন লক্ষ্য ভেদ! গত ক্লাব বিশ্বকাপের পর আবার একসঙ্গে মাঠে দেখা গেল এ সময়ের দুই বিস্ময়-প্রতিভাকে। সেবারের মতো এবারও প্রতিপক্ষ হিসেবেই মাঠে নেমেছিলেন আর্জেন্টাইন জাদুকরের বার্সা-সতীর্থ। দুজনই পরেছিলেন ১০ নম্বর জার্সি। শেষ পর্যন্ত নেইমারের অবশিষ্ট বিশ্ব একাদশকে মেসি ও তাঁর বন্ধুদের দল হারায় ৮-৫ গোলে। তবে ম্যাচের সেরা গোলটা করেন কনফেডারেশনস কাপে পাদপ্রদীপের সব আলো কেড়ে নেওয়া নেইমারই। দুটি গোল করেন এই ব্রাজিলীয়।তাঁর দ্বিতীয় গোলটিকেই বলা হচ্ছে ‘বিস্ময়কর’। ৪৫ গজ দূর থেকে নেইমার হঠাত্ এমন শট নিলেন, কেউ কিছু বুঝে ওঠার আগেই বল মেসিদের জালে! উরুগুইয়ান গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেরা চেষ্টা করার কোনো সুযোগই পেলেন না। নেইমারের জাদুকরি সেই গোলটি দেখুন, সিদ্ধান্ত নিন ব্রাজিলীয় ফরোয়ার্ড রোনালদো-মেসির জন্য হুমকি কি না। |
চুয়াডাঙ্গায় মাদকদ্রব্যসহ এক নারীকে আটক করেছে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি)। একইসঙ্গে ছয় কোটি টাকার বেশি মূল্যের অন্যান্য ভারতীয় পণ্য আটক করা হয়েছে । গত তিন দিনে এসব পণ্য আটক করা হয়।আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার দিকে চুয়াডাঙ্গার জাফরপুরে বিজিবি ব্যাটালিয়ন সদর দপ্তরে এক সংবাদ সম্মেলনে অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গাজী আসাদুজ্জামান এসব তথ্য জানান।সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, গত মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে সদর উপজেলার আকন্দবাড়িয়ায় করিমনভর্তি (শ্যালোচালিত অটোরিকশা) এক লাখ ৫৩ হাজার টাকা মূল্যের ফেনসিডিলসহ মমতাজ বেগম (৩০) নামের এক নারী মাদক পাচারকারীকে আটক করা হয়। তার আগেরদিন গত সোমবার (১ জুলাই) দুপুরে বিজিবির বিশেষ দল মাগুরার কাটাখালী এলাকায় যশোর থেকে ঢাকাগামী একটি মিনি ট্রাকে তল্লাশি চালায়। ট্রাক থেকে বিপুল পরিমাণ ভারতীয় ইমিটেশনের গয়না, চুড়ি, কানের দুল, ক্লিপ, টিকলি, টিপ ও মশা মারার ওষুধ উদ্ধার করে বিজিবি। এসবের আনুমানিক মূল্য ছয় কোটি টাকা। এ ছাড়া গত বুধবার সন্ধ্যা সাড়ে সাতটায় আকন্দবাড়িয়া থেকে মালিকবিহীন আরও এক লাখ টাকা মূল্যের ফেনসিডিল আটক করা হয়। |
জল ও স্থলে চরে যে, সে-ই উভচর। উদ্ভাবকেরা উভচর যান উদ্ভাবনে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছেন। সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের উদ্ভাবকেরা এমন একটি উভচর গাড়ি তৈরি করেছেন যা একটি চার চাকার গাড়ি, আবার নৌযানও। এটি চরে বেড়াতে পারে উঁচু-নিচু ভূমিতেও। ডাঙায় ও জলে সমান তালে চলতে সক্ষম গাড়ির দেখা সাধারণত জেমস বন্ড সিরিজের চলচ্চিত্রের জন্যই মানানসই। সম্প্রতি ডেইলি মেইল জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান ওয়াটারকার সম্প্রতি বিশ্বের সবচেয়ে দ্রুতগতির উভচর যান তৈরির দাবি করেছে। ওয়াটারকারের তৈরি এ গাড়িটির নাম ‘প্যান্থার’। ওয়াটারকার নির্মাতাদের দাবি, প্যান্থার যখন পানিতে চলে তখন সর্বোচ্চ ঘণ্টাপ্রতি ৪৫ মাইল গতি তুলতে পারে আর ডাঙায় সর্বোচ্চ ৮০ মাইল গতিতে ছুটতে পারে। গাড়ি থেকে জলযান হিসেবে রূপান্তর গাড়িটির মাত্র ১৫ সেকেন্ড সময় লাগে। ১৫ ফুট গাড়ির আদলে তৈরি এ উভচর যানটির দাম ৮৯ হাজার পাউন্ড। |
সপ্তাহের শেষ কার্যদিবসে আজ বৃহস্পতিবার প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) লেনদেন ৯০০ কোটি টাকা ছাড়িয়েছে। আর চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জের (সিএসই) লেনদেনও গতকালের চেয়ে বেড়েছে। বেলা আড়াইটায় দিনের লেনদেন শেষে দুই স্টক এক্সচেঞ্জেই বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারের দাম বেড়েছে। ফলে সূচকে ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা লক্ষ করা গেছে।ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) সূত্রে জানা যায়, আজ ডিএসইতে ৯১৩ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা গতকালের চেয়ে ১০৮ কোটি টাকা বেশি। গতকাল ডিএসইতে ৮০৫ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়। ডিএসইর পাশাপাশি সিএসইতেও আজ লেনদেন বেড়েছে। সিএসইতে আজ ৬৮ কোটি টাকার শেয়ার লেনদেন হয়েছে, যা গতকালের চেয়ে ১১ কোটি টাকা বেশি। গতকাল এই স্টক এক্সচেঞ্জে ৫৭ কোটি টাকার লেনদেন হয়।বাজার বিশ্লেষণে দেখা যায়, আজ ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স সূচক গতকালের চেয়ে ৩৮ পয়েন্ট বেড়ে ৪২৭০ পয়েন্টে দাঁড়িয়েছে।এর আগে সকালে সূচকের ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতায় ডিএসইতে লেনদেন শুরু হয়, লেনদেনের শেষ পর্যন্ত তা অব্যাহত ছিল।ডিএসইতে আজ লেনদেন হওয়া ২৯২টি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ২১৭টির দাম বেড়েছে, কমেছে ৬২টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ১৩টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম।দিনের শেষে ঢাকার বাজারে লেনদেনে শীর্ষে রয়েছে বিএসসিসিএল। এ ছাড়া ইউনিক হোটেল, সামিট পূর্বাঞ্চল পাওয়ার কোম্পানি, মেঘনা পেট্রোলিয়াম, ওরিয়ন ফার্মা, পদ্মা অয়েল, এনভয় টেক্সটাইল, কেয়া কসমেটিকস, আফতাব অটো, যমুনা অয়েল লেনদেনের শীর্ষে উঠে আসে।অন্যদিকে দিনের লেনদেন শেষে সিএসইর সার্বিক মূল্যসূচক গতকালের চেয়ে ১৩৯ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ১৩২৫৬ পয়েন্টে। সিএসইতে আজ ২১৮টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ার ও মিউচুয়াল ফান্ডের লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে ১৪৯টির দাম বেড়েছে, কমেছে ৪৭টির আর অপরিবর্তিত রয়েছে ২২টি প্রতিষ্ঠানের শেয়ারের দাম। |
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মহাজোট-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে সমর্থন জানিয়েছেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদ।দলের নেতা-কর্মীদের এখন থেকে তাঁর পক্ষে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। আজ বৃহস্পতিবার বেলা সোয়া দুইটার দিকে রাজধানীর গুলশান এলাকায় একটি ব্যাংকের কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এরশাদ এই নির্দেশ দেন। এরশাদ জানান, গত ২ জুলাই বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এম এ মান্নান ও মহাজোট-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা তাঁর সঙ্গে দেখা করে দোয়া চান।তিনি দুই পক্ষের সঙ্গে কথা বলে দুই প্রার্থীকে দোয়া করেন, তবে কাউকে সমর্থন দেননি।কিন্তু মান্নান বাইরে এসে বলেন, দোয়ার পাশাপাশি তাঁকে সমর্থনও দিয়েছেন তিনি।এতে সমর্থন নিয়ে ধূম্রজাল সৃষ্টি হয়। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান বলেন, এটা কাটানোর জন্য আজ আজমত উল্লাকে সমর্থন দেওয়া হয়েছে।এ ছাড়া যেহেতু জাতীয় পার্টি এখনো মহাজোটে আছে, তাই মহাজোট-সমর্থিত প্রার্থীকেই জাতীয় পার্টি সমর্থন দিয়েছে। এর আগে গতকাল বুধবার জাতীয় পার্টির প্রেস অ্যান্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভ রায় স্বাক্ষরিত বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, জাতীয় পার্টি গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো মেয়র প্রার্থীকে সমর্থন দেয়নি। এ ব্যাপারে সংবাদ মাধ্যমে কোনো একজন প্রার্থীর পক্ষে জাতীয় পার্টির সমর্থনের কথা প্রচার করা হয়েছে বা হচ্ছে—যা আদৌ সত্য নয়। কেন্দ্রের নির্দেশ ছাড়া কেউ জাতীয় পার্টির নামে কোনো প্রার্থীর পক্ষে সমর্থনের ঘোষণা দেওয়ার অধিকার রাখেন না। ওই চিঠিতে আরও জানানো হয়, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই মেয়র প্রার্থী পার্টির চেয়ারম্যান এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাত্ করে দোয়া চেয়েছেন। পার্টির চেয়ারম্যান তাঁদের শুভকামনা ও দোয়া করেছেন। কাউকে সমর্থন দেওয়ার কথা বলেননি। সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন অনুষ্ঠানের প্রত্যাশা করেছেন।এ ঘটনার পর নির্বাচন অনুষ্ঠানের এক দিন আগে আজ মহাজোট-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে সমর্থন জানায় জাতীয় পার্টি।এ ব্যাপারে জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, ‘পার্টির চেয়ারম্যান শেষ মুহূর্তে আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দিয়ে আমাদের বেইজ্জত না করলেও পারতেন। আমরা আগেও বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছিলাম। এখনো আমরা আগের অবস্থানেই আছি।’ গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির কাজী মাহমুদুল হাসান মনোনয়নপত্র তুলেও পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান। তিনি সরে আসার পর থেকে জেলা জাতীয় পার্টির কর্মী-সমর্থকেরা বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নানের পক্ষে কাজ করে আসছেন। |
কিশোরগঞ্জের উপনির্বাচনে ভোট ডাকাতির মহড়া হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে প্রধান বিরোধী দল বিএনপি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন। নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এই সংবাদ সম্মেলন হয়।সরকারের বিরুদ্ধে ভোট ডাকাতির অভিযোগ এনে ফখরুল বলেন, কিশোরগঞ্জের হাওরাঞ্চলে যেখানে এক কেন্দ্র থেকে আরেক কেন্দ্রে যেতে তিন-চার ঘণ্টা সময় লাগে, সেখানে আধা ঘণ্টার মধ্যে ফল ঘোষণা করা হয়েছে। ৩০ মিনিটের মধ্যে তিন ধরনের ফল হয়েছে। একবার বলা হয়েছে, বিজয়ী প্রার্থী এক লাখ ৫৬ হাজার ভোট পেয়েছেন; আরেকবার বলা হলো এক লাখ ৫৬ ভোট; সর্বশেষ বলা হলো ৯৯ হাজার ভোট পেয়েছেন।অথচ কয়েক দিন আগে অনুষ্ঠিত চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে এক কেন্দ্র থেকে আরেক কেন্দ্রের দূরত্ব ছিল ২০-২৫ মিনিটের, সেখানে ফল পেতে গভীর রাত পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়েছে।ফখরুল দাবি করেন, এতেই প্রমাণিত হয়, কিশোরগঞ্জে সবকিছু সরকারের পরিকল্পনামাফিক হয়েছে। তিনি বলেন, কিশোরগঞ্জের উপনির্বাচনের মাধ্যমে আবারও প্রমাণিত হয়েছে, এ সরকারের অধীনে জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু, অবাধ ও নিরপেক্ষ হওয়া সম্ভব নয়।গতকাল বুধবার কিশোরগঞ্জ-৪ আসনের উপনির্বাচনে ভোট নেওয়া হয়। অসমর্থিত সূত্রের হিসাব অনুযায়ী, নির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজওয়ান পেয়েছেন এক লাখ ৫৩ ভোট। প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী মহিতুল পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৭০ ভোট। বিএনপি এ নির্বাচনে অংশ নেয়নি।গাজীপুরে সরকার নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে প্রশাসনের কর্মকর্তাদের ব্যবহার করছে বলে অভিযোগ করেন মির্জা ফখরুল। সরকারের বিরুদ্ধে আচরণবিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ করে তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রীর উপদেষ্টা এইচ টি ইমাম, যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানকের নেতৃত্বে উত্তরায় একটি ‘সেল’ গঠন করা হয়েছে বলে তাঁরা বিশ্বস্ত সূত্রে জানতে পেরেছেন। |
গ্যাস সাশ্রয়ের লক্ষ্যে রমজান মাসে সারা দেশে বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকবে। আজ বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে বিদ্যুত্ উত্পাদন সর্বোচ্চ পর্যায়ে রাখার লক্ষ্যে এক পর্যালোচনা সভা শেষে প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানিবিষয়ক উপদেষ্টা তৌফিক-ই-ইলাহী চৌধুরী সাংবাদিকদের এই তথ্য জানান।সভায় বিদ্যুত্, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। রমজান মাসে বিদ্যুত্ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে ১০টি সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। সিএনজি স্টেশন ছাড়াও সারা দেশে রিরোলিং কারখানাগুলোতে সন্ধ্যা ছয়টা থেকে রাত ১১টা পর্যন্ত গ্যাস সরবরাহ বন্ধ থাকবে।এর আগে গতকাল আরেক বৈঠকে বিদ্যুত্ উন্নয়ন বোর্ডকে বলা হয়েছে, রমজান মাসে বিদ্যুেকন্দ্রগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে গ্যাস পাবে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস বিদ্যুেকন্দ্রগুলোতে সরবরাহ করা হবে।কর্মকর্তারা বলেন, সিএনজি স্টেশনে গ্যাস সরবরাহ ছয় ঘণ্টা স্থগিত রাখা হলেও বাসাবাড়িতে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হবে না। |
নির্বাচিত হলে নগরে পানি জমবে না, জলাবদ্ধতা সৃষ্টি হবে না—এসব অঙ্গীকার করছেন গাজীপুরের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মেয়র ও কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা। কিন্তু নির্বাচনী প্রচারে তাঁদের কর্মকাণ্ডে দেখা যাচ্ছে বিপরীত চিত্র। তাঁদের প্রচারে ব্যবহূত প্রায় ৭০ লাখ পোস্টারে ছেয়ে গেছে গোটা নগর। এতে পলিথিনের ব্যবহারও রয়েছে দেদার। নির্বাচন শেষে এসব পোস্টার ও পলিথিন নগরের জন্য জটিল এক জঞ্জালে পরিণত হবে। এই জঞ্জাল দ্রুত দূর করতে না পারলে চলতি বর্ষায় নগরের পানি ও পয়োনিষ্কাশনে বিরাট বাধা হয়ে দাঁড়াবে। দুর্ভোগে নাকাল হবে নগরের মানুষ। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান তিন লাখ পোস্টার ছেপেছেন। আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা ছেপেছেন দুই লাখ ২০ হাজার পোস্টার। মেয়র পদের অন্য প্রার্থীরা ছেপেছেন আরও প্রায় চার লাখ পোস্টার। কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ৫৭টি ওয়ার্ডে গড়ে একেকজন প্রার্থী ১০ হাজার পোস্টার ছেপেছেন। তাঁদের তথ্যমতে, সব মিলিয়ে প্রায় ৭০ লাখ পোস্টার ঝুলছে গোটা নগরে। গাজীপুরের বাসিন্দা জাতীয় ক্যানসার গবেষণা ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের শিক্ষক হাবিবুল্লাহ তালুকদার প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, গাজীপুর শহরে পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা খুব অপর্যাপ্ত। পলিথিনের বিভিন্ন জিনিস নর্দমায় আটকে থেকে ময়লা নিষ্কাশনব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি করবে, কৃষিজমিতে পড়লে মাটির উর্বরতা নষ্ট করবে। নির্বাচন কমিশনের উচিত পলিথিনের সব জিনিস সরাতে মেয়র পদপ্রার্থীদের নির্দেশনা দেওয়া।নির্বাচনী ইশতেহারে দুই প্রার্থীই জলাবদ্ধতা মোকাবিলা করার ঘোষণা দিয়েছেন। বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান বলেছেন, নগরের পয়োনিষ্কাশনের জন্য স্বল্প, দীর্ঘমেয়াদি আধুনিক ও কার্যকর ড্রেনেজ-স্যুয়ারেজ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে।এ ছাড়া নগরের বিভিন্ন আবাসিক এলাকা ও শিল্পাঞ্চলের ময়লা-আবর্জনা নির্দিষ্ট স্থানে রেখে রাতের মধ্যে তা অপসারণের ব্যবস্থা করা হবে বলে অঙ্গীকার করেছেন মান্নান। তিনি আরও অঙ্গীকার করেন, নগরের বিভিন্ন এলাকার জলাবদ্ধতা, বিশেষ করে টঙ্গী, কোনাবাড়ীসহ অন্যান্য শিল্পাঞ্চলের জলাবদ্ধতা নিরসনে অগ্রাধিকারভিত্তিতে কার্যকর ও দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নেবেন। তুরাগ, চিলাই নদীসহ নগরের সব খাল-নালা পুনঃখননের মাধ্যমে দ্রুত পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা করবেন।যুক্তরাজ্য থেকে নগরের পরিবেশ উন্নয়নে ভূমিকা রাখায় সনদ পাওয়া আওয়ামী লীগ-সমর্থিত প্রার্থী আজমত উল্লা খান বলেছেন, তিনি ২৯২ কিলোমিটার পাকা নর্দমা করেছেন। ভবিষ্যতে একটি আধুনিক শহর গড়ে তুলবেন।এসব অঙ্গীকার করলেও নির্বাচনে দাঁড়ানো প্রার্থীরা পোস্টার ঠিকই পলিথিনে ঝুলিয়েছেন। আইন করে বাংলাদেশে ১১ বছর আগে পলিথিনের উত্পাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ হয়েছে। আশির দশকের শুরুতে পলিথিনের ব্যবহার শুরু হয়। ক্রমে এই ব্যবহার বিপজ্জনক পর্যায়ে পৌঁছায়। প্রথম দিকে কোনো কোনো খাদ্য, ওষুধ, সিমেন্ট, সার ইত্যাদির মোড়ক হিসেবে পলিথিন ব্যবহারের অনুমতি দেওয়া হয়। পরিবেশবাদীরা যখন সরকারকে বোঝাতে সক্ষম হন, ১৯৮৮ ও ১৯৯৮ সালের বন্যায় নর্দমাগুলো পলিথিনে ভরে থাকায় পানি নিষ্কাশন করা যায়নি, ঢাকাবাসীকে দীর্ঘদিন জলাবদ্ধ থাকতে হয়েছে, তখন সরকার পলিথিনের ব্যবহার একেবারে নিষিদ্ধ করে দেয়।পলিথিনের ব্যবহার নিষিদ্ধ হলেও বিভিন্ন বিপণিকেন্দ্র, বাজারসহ অনেক জায়গাতেই পলিথিনের ব্যবহার চলছে। গাজীপুরের নির্বাচনেও এর ব্যতিক্রম নেই।পলিথিনের কারণে নগরের পানি ও পয়োনিষ্কাশনব্যবস্থায় বাধা সৃষ্টি হবে, এর পরও কেন পলিথিনে মোড়া পোস্টার টাঙানো হচ্ছে—এ ব্যাপারে জানতে চাইলে মেয়র-কাউন্সিলর পদের প্রার্থীরা বলেন, বৃষ্টিতে পোস্টার নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। এ জন্য পোস্টারগুলো পলিথিনে মোড়ানো হয়েছে। এ ব্যাপারে তাঁদের কিছু করার নেই।তবে প্রধান দুই প্রতিদ্বন্দ্বী এম এ মান্নান ও আজমত উল্লা খান প্রথম আলো ডটকমকে বলেন, নির্বাচিত হলে তাঁদের প্রথম কাজ হবে শুধু পলিথিন নয়, সব ধরনের বর্জ্য অপসারণ করা। নগরবাসীর কোনো অসুবিধা হবে না। |
কারস্টেন ফ্লিপকেনসের বেঁচে থাকা নিয়েই নাকি সংশয় দেখা দিয়েছিল। দুই পায়ের কাফ মাসলে রক্ত জমাট বেঁধে শারীরিক দিক দিয়ে প্রায় অক্ষমতার দিকেই হেঁটে গিয়েছিলেন নারী টেনিসের এই বেলজিয়ান সেনসেশন। আর সেই ফ্লিপকেনসই কিনা উইম্বলডনের সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছেন নিজের যোগ্যতা আর মানসিক শক্তির অপরূপ মিশেল ঘটিয়ে। এই তো গত বছরের উইম্বলডনের সময় তাঁর র্যাঙ্কিং ছিল ২৬২। তাঁর অবস্থান এতটাই করুণ ছিল যে উইম্বলডনে খেলারই ছাড়পত্র তিনি পাননি। সারা বিশ্ব যখন উইম্বলডনে বুঁদ হয়ে আছে, তখন তিনি খেলছেন ভার্জিনিয়ার এক ক্লে কোর্ট টুর্নামেন্টে। সেই ২৬২ নম্বরই মাত্র ১২ মাসের মধ্যে নিজেকে তুলে এনেছেন ২০ নম্বরে। তাঁর বাকি গল্পটা তো প্রায় রূপকথাই। কোয়ার্টার ফাইনালে ২০১১ সালের চ্যাম্পিয়ন কিভিতোভাকে ছিটকে দিয়ে তিনি এখন সেই রূপকথারই রানি। শারীরিক অসুস্থতা ও ফর্ম হারিয়ে ফেলায় একটা সময় তিনি বেলজিয়াম টেনিস ফেডারেশনের যাবতীয় আর্থিক সহায়তা থেকে বঞ্চিত ছিলেন। পায়ের কাফ মাসলের চিকিত্সাটা করাতে হয়েছে একেবারে নিজের পয়সায়। সেই চিকিত্সার ধকলটা তাঁর ব্যক্তিগত ও পারিবারিক জীবনকে প্রায় অচল করে দিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তিনি নিজেই, ‘চিকিত্সাটা যদিও সফল হয়েছে, কিন্তু এর খরচ জোগাতে আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিকভাবে প্রায় ফতুর হয়ে গেছি। শেষ হয়ে গেছে আমার অর্জন প্রাইজমানির সবটাই।’ এমন একটা পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যাওয়া ফ্লিপকেনসের সামনে কীভাবে উইম্বলডন জয়ের স্বপ্নটা উঁকি-ঝুঁকি দিচ্ছে, তা এককথায় অবিশ্বাস্য। ফ্লিপকেনসের সামনে স্বপ্নের বীজটা বুনে দিয়েছিলেন এক বেলজিয়ান শিল্পপতি। টেনিস-পাগল এই শিল্পপতি বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আর্থিক সহায়তার হাত। তাঁর সাহায্য ছাড়া ফ্লিপকেনস নাকি উইম্বলডনেই আসতে পারতেন না, ‘পেশাদার সার্কিটে ট্যুর করার আর্থিক সংগতি আমার ছিল না। ওই সহূদয় ব্যক্তিটি (শিল্পপতি) এগিয়ে না এলে আমার এই পর্যায়ে আসা হতো না।’বেলজিয়াম টেনিসের সর্বকালের সেরা তারকা কিম ক্লিস্টার্সের কাছেও দারুণ ঋণী ফ্লিপকেনস। তাঁর উত্সাহ আর অনুপ্রেরণাই তাঁকে শক্তি জুুগিয়েছে। নয়তো এত ঝড়-ঝঞ্ঝা যাঁর ওপর দিয়ে গেছে, তাঁকে এই পর্যায়ে দেখাটাই তো হূদয়ে এঁকে দেয় বিরাট এক বিস্ময়-বোধক চিহ্ন।রূপকথার গল্পের শেষটা ফ্লিপকেনস কেমন করতে পারেন—এখন দেখার বিষয় এটিই। সেমিফাইনাল লাইনআপে সাবিনা লিসিক ও আগ্নিয়েস্কা রাদাভানস্কার লড়াইটি ছাপিয়ে তাই মারিওন বারতোলি ও কারস্টেন ফ্লিপকেনসের লড়াইটিই দর্শকদের আগ্রহের কেন্দ্রতে।রূপকথার গল্প তো মানুষ এমনিতেই বেশি পছন্দ করে! সূত্র: ওয়েবসাইট। |
কুমিল্লার আদর্শ সদর উপজেলার রসুলপুর এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার বেলা ১২টার দিকে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকাগামী মালবাহী ট্রেনের একটি বগি লাইনচ্যুত হয়েছে। এতে ঢাকা-চট্টগ্রাম, চট্টগ্রাম-সিলেট ও ঢাকা-নোয়াখালী রেলপথে ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে।এ ঘটনায় চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী এক্সপ্রেস ট্রেনটি কুমিল্লার ব্রাহ্মণপাড়া উপজেলার শশীদল রেলস্টেশনে আটকা পড়েছে। কুমিল্লা রেলস্টেশনে আটকা পড়েছে চট্টগ্রাম থেকে সিলেটগামী পাহাড়িকা এক্সপ্রেস ট্রেন।কুমিল্লা রেলস্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ হোসেন মজুমদার প্রথম আলো ডটকমকে জানান, আখাউড়া থেকে উদ্ধারকারী ট্রেন পাঠানোর জন্য বার্তা পাঠানো হয়েছে। |
সামরিক হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পর সে দেশের সাধারণ মানুষ নানা কথা বলছে। আজ আল-জাজিরার এক খবরে বলা হয়, গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত মিসরের প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করে সেনাবাহিনী দেশটির ভবিষ্যত্ রাজনীতির একটি ‘রোডম্যাপ’ ঘোষণা করেছে। আর এই রোডম্যাপ জাতীয় বিরোধ নিষ্পত্তিকরণ কমিটি বাস্তবায়ন করবে। গতকাল বুধবার দেশটির সেনাপ্রধান এক ঘোষণায় সংবিধান স্থগিত করে দিয়েছেন। একই সঙ্গে প্রধান বিচারপতি আদলি মানসুরকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হয়েছে। এ ঘটনায় মিসরের সাধারণ জনগণের মাঝে বিভিন্ন প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। রাজধানী কায়রোবাসীর কয়েকজনের প্রতিক্রিয়া: আদেল আল-বেনদারি, জনসংযোগ কর্মকর্তা আগে আমরা একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করেছি, এবার দ্বিতীয়বারের মতো আরও একজন স্বৈরশাসককে ক্ষমতাচ্যুত করা হলো। যদি প্রয়োজন হয়, তাহলে আবার কাউকে ক্ষমতাচ্যুত করা হবে। সেটা সেনাবাহিনী হোক আর রাজনীতিবিদ হোক। এ ব্যাপারে আমরা এখন অভিজ্ঞ। নিশ্চয়ই তাঁরা মুরসি বা মোবারকের মতো পরিস্থিতির মুখোমুখি হওয়ার মতো কাজ করবেন না। হাইসাম হাগাগ, প্রকৌশলীএটা অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল নয়। রাস্তায় বেরিয়ে আসা মানুষদের দিকে তাকান, তাঁরা বলছে, এটা একটা বিপ্লব।আশরাফ আল-শেরিফ, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকআমরা যেহেতু নতুন একটি সংশোধিত রোডম্যাপের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে, কাজেই এখন সংবিধানের যথার্থতা নিয়ে কথা বলতে পারি না। মিসরের ভবিষ্যত্ উন্মুক্ত রয়েছে। এখানে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যেমন সুযোগ রয়েছে, তেমনি সুযোগ রয়েছে স্বৈরতন্ত্রের জন্যও। রোডম্যপে অনেক খুঁত ও সমস্যা থাকবে, কিন্তু আন্দোলনকারীরাও ইতিমধ্যে অনেক পাঠ নিয়েছে।গালাল মুরা, নূর পার্টির সেক্রেটারি জেনারেলএই অবস্থান আমরা তৈরি করেছি। শুধু জনগণের মাঝে রক্তপাত বন্ধে এই সিদ্ধান্তও আমরাই নিয়েছি। |
মিসরের রাজধানী কায়রোর তাহরির স্কয়ারে ২০১১ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি উল্লাসের বন্যা বয়ে গিয়েছিল। উপলক্ষ—স্বৈরশাসক হোসনি মোবারকের পতন। মাত্র আড়াই বছরের ব্যবধানে একই রূপে তাহরির স্কয়ার। এবারের উত্সব সেনা অভ্যুত্থানে দেশটির নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির পতন। বিশ্লেষকেরা বলছেন, ভুল পথে হেঁটে জনগণের পাহাড়সমান আকাঙ্ক্ষা পূরণে ব্যর্থতাই তাঁর পতন ডেকে এনেছে। টানা ১৮ দিনের গণ-আন্দোলনে মোবারকের ৩০ বছরের শাসনের অবসান ঘটে। এরপর দেশটির ক্ষমতা যায় সেনাবাহিনীর হাতে। নির্বাচিত বেসামরিক প্রশাসনের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর নিয়ে তৈরি হয় নানা অনিশ্চয়তা। গত বছরের ২৩ ও ২৪ মে মিসরে প্রথম দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। ১৬ ও ১৭ জুন দ্বিতীয় দফার প্রেসিডেন্ট নির্বাচন হয়। স্বচ্ছ ও নিরপেক্ষ ওই ঐতিহাসিক প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে গত বছর দেশটির ক্ষমতায় আসেন ইসলামপন্থী মুসলিম ব্রাদারহুড-সমর্থিত মোহাম্মদ মুরসি। মুরসির এ জয়ে অনেকেই গণতান্ত্রিক মিসরের স্বপ্ন দেখেছেন। তখন দেশি-বিদেশি বিশ্লেষকেরা বলছিলেন, তাঁর পথ মোটেও সহজ হবে না। ক্ষমতায় টিকে থাকতে হলে তাঁকে সেনাবাহিনীর সঙ্গে আপস করতে হবে। ক্ষমতা গ্রহণ করেই সামরিক বাহিনীকে চ্যালেঞ্জ করেন মুরসি। গত বছর গণ-অভ্যুত্থানের সময় সংঘটিত হত্যাকাণ্ড তদন্তের আদেশ দেন তিনি। এ ছাড়া পার্লামেন্ট বিলুপ্ত ও পুনরুজ্জীবিত করা নিয়ে সামরিক বাহিনীর সুপ্রিম কাউন্সিল ও সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালতের সঙ্গে মুরসির বিরোধ চরমে পৌঁছে। মিসরের তত্কালীন সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল হুসেইন তানতাউয়ি ও সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ সামি আনানকে অপসারণ করেন মুরসি। তানতাউয়ির জায়গায় সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান এবং প্রতিরক্ষামন্ত্রী করা হয় জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল সিসিকে। দুই জেনারেলকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি মুরসি সামরিক পরিষদের আনা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্বকারী সাংবিধানিক সংশোধনীও বাতিল করেন। একটি বিতর্কিত ডিক্রি জারি করে নিজের ক্ষমতা বাড়িয়েছেন মুরসি। বিরোধীরা তাঁর এ পদক্ষেপ প্রত্যাখ্যান করে। এ নিয়ে বিচার বিভাগের সঙ্গেও মুরসির বিরোধ দেখা দেয়। মুরসি একচ্ছত্র ক্ষমতা দখল করতে চান বলে অভিযোগ করে সরকারবিরোধীরা। এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মুরসির সমর্থকদের সঙ্গে বিরোধীদের সংঘর্ষ হয়েছে। নতুন মিসরে জনপ্রত্যাশা ছিল আকাশচুম্বী। কিন্তু মুরসি তা পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। মুরসির শাসনে আশা ভঙ্গ হয়েছে মিসরীয়দের। দেশটিতে বেড়েছে বিভক্তি। সমালোচকদের মতে, মিসরে অংশগ্রহণমূলক গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে পারেননি ইসলামপন্থী প্রেসিডেন্ট মুরসি। রাষ্ট্র পরিচালনায় বিরোধীদের আস্থায় নিতে পারেননি তিনি। তাই শুরু থেকেই তাঁকে নানামুখী বিরোধিতায় পড়তে হয়েছে। মুরসির অধীনে দেশটির নিরাপত্তাব্যবস্থা দিন দিন খারাপ হয়েছে। অর্থনীতি নাজুক পরিস্থিতিতে পৌঁছেছে। প্রবৃদ্ধির গতি নিম্নমুখী। চরম আকার ধারণ করেছে বেকারত্ব। রাজনৈতিক অস্থিরতায় বিদেশি বিনিয়োগ কমেছে। শরিয়া আইনকে মিসরের নতুন সংবিধানের ভিত্তি করেছেন মুরসি। এটা ছিল হোসনি মোবারকবিরোধী অভ্যুত্থানের চেতনার পরিপন্থী। তা ছাড়া সংবিধানে নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকারের বিষয়েও বৈষম্য করা হয়েছে। এ পদক্ষেপে সংখ্যালঘু ও উদারবাদীরা ক্ষুব্ধ হয়েছেন। হোসনি মোবারক-পরবর্তী মিসর নানা সমস্যায় জর্জরিত। অথচ সমস্যা সমাধানের পরিবর্তে মুরসির নজর ছিল নিজের অবস্থান পাকাপোক্ত করার দিকে। গত রোববার ছিল মুরসির দায়িত্ব গ্রহণের এক বছরপূর্তি। এ প্রেক্ষাপটে মুরসিবিরোধীরা রাজপথে নেমে আসে। এ সময় মুরসিপন্থী ও বিরোধীদের মধ্যে রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ হয়। এতে প্রাণহানির ঘটনাও ঘটে। রোববার কায়রোর তাহরির স্বয়ারে বিক্ষোভের ডাক দেয় বিরোধীরা। ওই বিক্ষোভে লাখো জনতা প্রেসিডেন্টের পদত্যাগ দাবি করে। মুরসিকে পদত্যাগের জন্য সময় বেঁধে দেয় বিরোধীরা।চলমান রাজনৈতিক সংকটের পরিপ্রেক্ষিতে গত সোমবার একটি বিবৃতি দেয় দেশটির সশস্ত্র বাহিনী। রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ও চলমান রাজনৈতিক সংকট সমাধানে সব রাজনৈতিক গোষ্ঠীকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেয় সেনাবাহিনী।রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে প্রচারিত সেনাবাহিনীর বিবৃতিতে বলা হয়, জনগণের দাবি মেনে নেওয়ার জন্য আবার আহ্বান জানাচ্ছে সশস্ত্র বাহিনী। শেষ সুযোগ হিসেবে সবাইকে ৪৮ ঘণ্টা সময় দেওয়া হলো। দেশের জাতীয় নিরাপত্তা চরম হুমকির মধ্যে। যদি সমস্যার সমাধান না হয়, তবে দেশপ্রেম ও দায়িত্ববোধের ঐতিহ্য অনুযায়ী হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে সেনাবাহিনী।মিসরের সেনাবাহিনীর বেঁধে দেওয়া ৪৮ ঘণ্টার সময়সীমা প্রত্যাখ্যান করেন প্রেসিডেন্ট মুরসি। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, পরিকল্পনা অনুযায়ী সংস্কার কার্যক্রম চালিয়ে যাবেন। গত মঙ্গলবার মধ্যরাতে টেলিভিশনে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে তিনি বলেন, প্রাণ গেলেও সরে যাবেন না।গতকাল বুধবার রাতে মুরসিকে সরিয়ে দেয় সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে দেশের সংবিধান স্থগিত করে প্রধান বিচারপতি আদলি মানসুরকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হয়েছে।গতকাল রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল সিসি বলেন, দেশকে বাঁচাতে মুরসিকে সরিয়ে দিয়ে সেনাবাহিনী তাদের ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ পালন করেছে। মুরসি ক্ষমতা ভাগাভাগিতে বিরোধীদের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন।—বিবিসি, টাইমস অব ইন্ডিয়া, দ্য কমেনটেটর অবলম্বনে। |
যুক্তরাজ্য ও পূর্ব ইউরোপীয় প্রজাতন্ত্র বেলারুশে সপ্তাহব্যাপী সফরের উদ্দেশে আজ বৃহস্পতিবার সকালে রাজধানীর শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে রওনা হয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। খবর বাসসের। সকাল সাড়ে নয়টায় প্রধানমন্ত্রী ও তাঁর সফরসঙ্গীদের নিয়ে বাংলাদেশ বিমানের ভিভিআইপি ফ্লাইট লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করে। আজ লন্ডনের স্থানীয় সময় বেলা পৌনে তিনটায় তাঁর পৌঁছানোর কথা। ৮ জুলাই পর্যন্ত লন্ডনে অবস্থান করবেন প্রধানমন্ত্রী। এর পর তিনি বেলারুশ যাবেন। ১১ জুলাই তাঁর ঢাকায় ফেরার কথা। |
ঢাকার নৌপথে যাত্রী পরিবহনের লক্ষ্যে আবার ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করেছে বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ নৌ-পরিবহন সংস্থা (বিআইডব্লিউটিসি)। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টার দিকে গাবতলী ওয়াটার বাস ল্যান্ডিং স্টেশনে এই সার্ভিসের উদ্বোধন করেন নৌ-পরিবহনমন্ত্রী শাজাহান খান। বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, ঢাকা থেকে গাবতলী নৌপথে নতুন চারটি ও আগের দুটি মিলিয়ে মোট ছয়টি ওয়াটার বাস নামানো হয়েছে। এ বাসগুলো প্রতিদিন সকাল সাতটা থেকে সন্ধ্যা সাতটা পর্যন্ত এক ঘণ্টা পর পর ছেড়ে যাবে। গাবতলী থেকে সদরঘাট পর্যন্ত ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে ৩০ টাকা। যাত্রাপথে এক স্টেশন থেকে অন্য স্টেশনের ভাড়া ১৫ টাকা। এবার যাত্রী আকর্ষণে ভর্তুকি দিয়ে ভাড়া নির্ধারণ করা হয়েছে। আগের প্রতিটি বাস ৩৫ জন যাত্রী বহন করতে পারত। কেরানীগঞ্জে বেসরকারি প্রতিষ্ঠান ঢাকা ডকইয়ার্ডে নবনির্মিত চারটি ওয়াটার বাসের প্রতিটির যাত্রী ধারণক্ষমতা ৮১ জন। সদরঘাট থেকে যাত্রা করবে ওয়াটার বাস। পথে খোলামোড়া, সোয়ারীঘাট, বছিলা ও রায়েরবাজারে যাত্রী ওঠানামা করতে পারবে। নয় বছর আগে, ২০০৪ সালে একটি ওয়াটার ট্যাক্সি নামানো হয়েছিল। এরপর ২০১০ সালের ২৮ আগস্ট দুটি নৌযান দিয়ে দ্বিতীয় ওয়াটার বাস সার্ভিস চালু করা হয়। তবে দুবারই যাত্রীর অভাব, নৌযানে ত্রুটির কারণে এ সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। এ নিয়ে তৃতীয়বারের মতো ওয়াটার বাস চালু হলো। |
দেশের মাটিতে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট নেই। ক্রিকেটারদের সাম্প্রতিক ফর্মও সুবিধার নয়। গত মাসে চ্যাম্পিয়নস ট্রফির গ্রুপ পর্ব থেকে ছিটকে পড়ে পাকিস্তান দল। ক্রিকেটারদের স্পট ফিক্সিং কেলেঙ্কারি, অভিযোগ আছে আম্পায়ারদের বিরুদ্ধেও। সার্বিক পরিস্থিতিতে পাকিস্তান ক্রিকেট বোর্ডের (পিসিবি) অন্তর্বর্তীকালীন চেয়ারম্যান নজম শেঠির বিশ্বাস, একেবারে তলানিতে এসে ঠেকেছে পাকিস্তানের ক্রিকেট। লন্ডনে আইসিসির বার্ষিক সভা শেষে গতকাল বুধবার দেশে ফিরে পাকিস্তানি পত্রিকা ডনের সঙ্গে কথা বলার সময় নজম শেঠির কণ্ঠে ছিল হতাশার সুর, ‘আমাদের ক্রিকেট তলানিতে এসে ঠেকেছে। ম্যাচ জিততে পারছি না। ক্রিকেটারদের বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগ। একজন আম্পায়ার নিষিদ্ধ হয়েছেন। কেউ পাকিস্তান সফরে আসছে না। এখন সবকিছু নিয়েই ভাবতে হচ্ছে আমাদের।’ ২০০৯ সালের মার্চে লাহোরে শ্রীলঙ্কা দলকে বহনকারী গাড়িতে হামলা চালায় সন্ত্রাসীরা। হামলায় পাকিস্তানের ছয় পুলিশ ও একজন গাড়িচালক নিহত হন। আহত হন পাঁচ ক্রিকেটার। এরপর থেকে পাকিস্তানে খেলতে যায়নি কোনো টেস্ট খেলুড়ে দেশ। খুব দ্রুত যে পাকিস্তানে আন্তর্জাতিক ক্রিকেট ফেরার সম্ভাবনা নেই, সেটা স্বীকার করছেন নজম শেঠি, ‘সবাই নিরাপত্তার নিশ্চয়তা চায়। যতক্ষণ আমরা সেই নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে না পারব, কেউ পাকিস্তান সফর করবে না।’দেশে ক্রিকেট ফিরিয়ে আনতে আইসিসির সভায় গিয়ে কী কী চেষ্টা করেছেন, তার ফিরিস্তিও দিয়েছেন নজম, ‘ইংল্যান্ড ও ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের সঙ্গে কথা বলেছি। তাদের অনুরোধ করেছি, যেকোনো একটা দল পাকিস্তানে পাঠাতে, যেন আমরা অন্তত প্রক্রিয়াটা শুরু করতে পারি। নিরাপত্তার ব্যাপারে আইসিসিকেও নিশ্চয়তা দিয়েছি। বলেছি, পাকিস্তানে নতুন সরকার গঠিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ দেশ থেকে সন্ত্রাসের মূলোত্পাটন করতে বদ্ধপরিকর। কর্মকর্তারা আমাকে জানিয়েছেন, পাকিস্তানের নিরাপত্তার অগ্রগতি মূল্যায়ন করে সিদ্ধান্ত নেবেন তাঁরা।’সাম্প্রতিক বছরগুলোতে স্পট ফিক্সিংয়ের কারণে পাকিস্তানের চার ক্রিকেটার নিষিদ্ধ হয়েছেন। লর্ডস টেস্টে ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকায় ২০১১ সালে সালমান বাটকে ১০, মোহাম্মদ আসিফকে সাত ও মোহাম্মদ আমিরকে পাঁচ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করে আইসিসি। অন্যদিকে কাউন্টিতে ফিক্সিংয়ে জড়িত থাকায় দানিশ কানেরিয়া ইংল্যান্ড ক্রিকেটে আজীবনের জন্য নিষিদ্ধ হয়েছেন। এই লেগস্পিনার নিষিদ্ধ আছেন পাকিস্তান ক্রিকেটেও। শুধু ক্রিকেটার নন, ভারতীয় একটি টেলিভিশনের ফাঁদে পা দিয়ে গত বছর ফিক্সিং করতে রাজি হওয়ায় পাকিস্তানি আম্পায়ার নাদিম ঘৌরি নিষিদ্ধ হন চার বছরের জন্য |
মিসরে সামরিক হস্তক্ষেপের মধ্য দিয়ে প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসির অপসারণ ও সংবিধান স্থগিত করার ঘটনায় আন্তর্জাতিক অঙ্গনে মিশ্র প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার আল-জাজিরার খবরে বিশ্ব নেতাদের ও সংস্থার একাংশের প্রতিক্রিয়া তুলে ধরা হয়েছে।যুক্তরাষ্ট্রমুরসির অপসারণের কিছু সময় পরই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামা এক বিবৃতিতে জানান, তিনি এ ঘটনায় গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। শিগগিরই বেসামরিক সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর করার আহ্বান জানান তিনি।ওবামা বলেন, ‘জটিলতা ছাড়া গণতন্ত্রে উত্তরণ হয় না, কিন্তু শেষ পর্যন্ত জনগণের ইচ্ছায় সত্যের প্রতিষ্ঠা ঘটে। মিসরের সাধারণ জনগণ যা চায় ও যা তাদের প্রাপ্য, যারা সেই ইচ্ছার মূল্য দেবে, তারাই কেবল একটি সত্, যোগ্য ও প্রতিনিধিত্বমূলক সরকার হতে পারে।’ তিনি আরও বলেন, মিসরে গণতন্ত্রের উত্তরণে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করবে।মুরসিকে হটানোর পরপরই কায়রোয় অবস্থিত মার্কিন দূতাবাসের তুলনামূলক কম গুরুত্বপূর্ণ কর্মকর্তা ও তাঁদের পরিবারের সদস্যদের মিসর ত্যাগের নির্দেশ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র। দেশটিতে চলমান রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতার কারণে এমন সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ওই বিবৃতিতে জানানো হয়।যুক্তরাজ্যমিসরের বর্তমান পরিস্থিতিতে সবাইকে শান্ত থাকার আহ্বান জানিয়েছে যুক্তরাজ্য। ক্ষমতা পরিবর্তনের ক্ষেত্রে সামরিক হস্তক্ষেপের সমালোচনা করেছে দেশটি। এ ঘটনাকে ‘অভ্যুত্থান’ বলতে নারাজ যুক্তরাজ্য।দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগ এক বিবৃতিতে বলেন, ‘একটি গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার রাজনৈতিক সংকট নিরসনের উপায় হিসেবে সামরিক হস্তক্ষেপকে কখনো সমর্থন করে না যুক্তরাজ্য।’ দ্রুত নির্বাচনের আয়োজন করা ও সমস্যা সমাধানে দেশটির রাজনৈতিক দলগুলোকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জনগণের রায়ে নির্বাচিত গণতান্ত্রিক একটি সরকারই কেবল দীর্ঘ মেয়াদে স্থিতিশীলতা বয়ে আনতে পারে।’ফ্রান্সমিসরে ক্ষমতার পালাবদলের পর দ্রুতই দেশটিতে নির্বাচন অনুষ্ঠিত করার ঘোষণা দেওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছে ফ্রান্স। দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী লরাঁ ফেবিয়াস বলেন, ফ্রান্স আশা করে জনগণের শান্তি, ব্যক্তি স্বাধীনতা ও গণতান্ত্রিক উত্তরণের প্রতি সম্মান রেখে দ্রুতই একটি সময়সীমা নির্ধারণ করা হবে, যাতে করে মিসরের জনগণ স্বাধীনভাবে তাদের নেতা ও ভবিষ্যত্ বেছে নিতে পারে।ইউরোপীয় ইউনিয়নমিসরে শিগগিরই গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানিয়েছে ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ)। ইইউর পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক প্রধান ক্যাথেরিন অ্যাস্টন এক বিবৃতিতে বলেন, ‘আমি সব পক্ষকে দ্রুত গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানাই। গণতন্ত্রে উত্তরণের পথ হিসেবে প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে এবং সংবিধানকে অনুমোদন দিতে হবে।’অস্ট্রেলিয়াঅস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী কেভিন রাড বলেন, মিসরে যত দ্রুত সম্ভব পূর্ণ গণতন্ত্র দেখতে চান তাঁরা। মিসরে অবস্থানরত সব অস্ট্রেলিয়ান নাগরিককে ওই দেশ ত্যাগ করার পরামর্শ দিয়েছেন তিনি।সৌদি আরবসৌদি আরবের বাদশা আবদুল্লাহ মিসরের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান আদলি মানসুরকে অভিনন্দন জানিয়ে গতকাল একটি চিঠি পাঠিয়েছেন। চিঠিতে বলা হয়, ‘মিসরের এই সংকটময় সময়ে সৌদি জনগণের পক্ষ থেকে আমরা আপনাদের অভিনন্দন জানাই। আমরা প্রার্থনা করি, আপনাদের ওপর যে দায়িত্ব অর্পিত হয়েছে, তা যেন পালনে আপনারা সমর্থ হন।’সংযুক্ত আরব আমিরাতমিসরের সেনাবাহিনীর উদ্যোগের প্রশংসা করে দেশটির রাজনৈতিক পরিবর্তনকে স্বাগত জানিয়েছে সংযুক্ত আরব আমিরাত। দেশটির রাষ্ট্রনিয়ন্ত্রিত সংবাদ সংস্থা ডব্লিউএএম জানায়, সংযুক্ত আরব আমিরাতের পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল-নাহিয়ান আশা প্রকাশ করেছেন, তিনি বিশ্বাস করেন যে মিসরের জনগণ এই সংকটকালীন মুহূর্ত পার করতে সক্ষম হবে।সিরিয়াসিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ গতকাল মিসরের জনগণের সরকারবিরোধী আন্দোলনের প্রশংসা করেছেন। সেনাবাহিনীর হস্তক্ষেপের মাধ্যমে মুরসির অপসারণকে তিনি ‘রাজনৈতিক ইসলামের’ সমাপ্তি বলে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্বে যারাই ধর্মকে রাজনৈতিক হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করে, তাদের এমনই পরিণতি হবে।’ |
ভারচুয়াল জগতের কোনো বস্তুকে যখন টাচস্ক্রিনের মাধ্যমে স্পর্শ করা হবে তখন সে বস্তুকে অনুভব করা যাবে। সম্প্রতি মাইক্রোসফটের গবেষকেরা থ্রিডি বা ত্রিমাত্রিক প্রযুক্তির এমনই টাচস্ক্রিন উদ্ভাবন করেছেন। এক খবরে এ তথ্য জানিয়েছে বিবিসি অনলাইন। গবেষকেরা জানিয়েছেন, ভারচুয়াল বস্তু অনুভব করার এই প্রকল্পে ব্যবহূত হয়েছে একটি এলসিডি ফ্ল্যাট প্যানেলের স্ক্রিনে ফোর্স সেন্সর ও রোবটিক বাহু ব্যবহার করা হয়েছে। এই সেন্সর ও রোবটটিক পদ্ধতি ভার্চুয়াল বস্তুকে সামনে ও পেছনে ঠেলে দেওয়ার অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে। গবেষকেরা জানিয়েছেন, এ গবেষণা চিকিত্সাক্ষেত্রে ও গেম তৈরিতে ব্যবহার করা যাবে। ভারচুয়াল বস্তু স্পর্শের প্রযুক্তি হলোডেস্ক মাইক্রোসফট এমন প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছে যাতে কোনো ভারচুয়াল বস্তু হলোগ্রাফিক প্রযুক্তিতে স্পর্শের অনুভূতি জাগাতে পারে। গবেষকেরা এ প্রযুক্তিটির নাম দিয়েছেন ‘হলোডেস্ক’। এ প্রযুক্তির মাধ্যমে ভারচুয়াল থ্রিডির কোনো বস্তুকে ছুঁয়ে দেখার অনুভূতি মিলবে এবং ভারচুয়াল থ্রিডির বস্তুটিও বাস্তব কোনো বস্তুর নিয়মেই আচরণ করবে। এ প্রযুক্তিতে ওপরের একটি স্ক্রিন থেকে দ্বিমাত্রিক ছবি প্রজেক্টরের মাধ্যমে একটি নির্দিষ্ট স্থানে পড়বে। একটি কাইনেটিক ক্যামেরা ব্যবহারকারীর হাত বরাবর এ প্রজেক্টরের ওপর বস্তুর থ্রিডি ছবি দেখাবে। এদিকে, একটি ওয়েবক্যাম ব্যবহারকারীর মুখভঙ্গি ট্র্যাক করে বস্তুটিকে তার স্পর্শানুভূতির নাগালে এনে দেবে। আর সবগুলো ডিভাইস একত্রে একটি এলগরিদম মেনে রিয়েল টাইমেই ভার্চুয়াল থ্রিডি বস্তুকে নিজের মতো করে অনুভবের সুযোগ দেবে।ব্যবহারকারী নির্দিষ্ট এলাকায় হাত রেখে সামনে থাকা স্বচ্ছ একটি ডিসপ্লেতে বস্তুটি দেখতে পাবেন। টাচস্ক্রিনে অনুভব করা যাবে কিবোর্ডটাচ স্ক্রিনযুক্ত পণ্যে ফোর্স সেন্সর ও রোবটটিক বাহু ব্যবহার করা ফলে টাচস্ক্রিনের ওপরে কিবোর্ড বা কিবোর্ডের বাটনগুলো স্পর্শ করার অনুভূতি পাওয়া যাবে। মাইক্রোসফটের গবেষকেরা জানিয়েছেন, টাচস্ক্রিন সুবিধার কোনো পণ্যে আলাদাভাবে কোনো কি-বাটনের স্পর্শ অনুভব করা যায় না বলেই দ্রুতগতিতে টাইপ করা কষ্টকর। তাঁরা টাচস্ক্রিনে বাটনের অস্তিত্ব অনুভব করার প্রযুক্তি নিয়ে কাজ করছেন। গবেষকেরা জানিয়েছেন, টাইপের প্রয়োজন হলে এ কী-বোর্ড ব্যবহার করে দ্রুত টাইপ করা যাবে আবার টাইপ শেষ হলেই মিলিয়ে যাবে। |
ক্ষমতাচ্যুত করার পর মিসরের প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে একটি সেনা স্থাপনায় আটকে রাখা হয়েছে।মুরসির শীর্ষ সহযোগীরাও তাঁর সঙ্গে আটক রয়েছেন।মুসলিম ব্রাদারহুডের একজন জ্যেষ্ঠ নেতা এ তথ্য জানান।আজ বৃহস্পতিবার বার্তা সংস্থা এপি অনলাইনের প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।মুরসির ডানহাত বলে পরিচিত এসাম এল হাদ্দাদের ছেলে জিহাদ এল হাদ্দাদ বলেন, ‘মুরসি ও তাঁর সহযোগী সব কর্মকর্তাকে প্রেসিডেন্সিয়াল রিপাবলিকান গার্ডস ক্লাবে গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছে।তবে মুরসিকে তাঁর সহযোগীদের কাছ থেকে আলাদা করে প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ে নিয়ে যাওয়া হয়েছে।’ মুরসিকে বন্দী করার তথ্যের সত্যতা যাচাইয়ে সেনা মুখপাত্রের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি এ ব্যাপারে কথা বলতে রাজি হননি।মুরসিকে পরে ছেড়ে দেওয়া হবে কি না, এ ব্যাপারেও তিনি কিছু জানাননি। তবে ইউটিউবে পোস্ট করা একটি ভিডিওতে মুরসি বলেন, ‘আমিই মিসরের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট।’ গত বছরের নির্বাচন ও গত ডিসেম্বরের সাংবিধানিক গণভোটের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘এখন এর বৈধতা রক্ষা করা জনগণের দাবি।’ মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার বিষয়টিকে তাঁর কার্যালয় থেকে ‘অবৈধ’ ঘোষণা করা হয়েছে। একই সঙ্গে মিসরবাসীকে শান্তিপূর্ণভাবে এ ‘সামরিক অভ্যুত্থান’ ঠেকানোর আহ্বান জানানো হয়। প্রতিবেদনে জানানো হয়, মুরসির সহযোগীরা নিজেদের টেলিফোন-সংযোগ বন্ধ রেখেছেন। অন্যান্য সহযোগী যাঁরা গতকাল মুরসির সঙ্গে ছিলেন না, তাঁরা জানান, তাঁদের নেতার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারছেন না। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে মুরসি রিপাবলিকান গার্ডসের সদর দপ্তরে তাঁর কার্যালয়ে ছিলেন। একজন পুলিশ কর্মকর্তা জানান, মুসলিম ব্রাদারহুডের ৩০০ নেতা-কর্মীর বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়েছে।পুলিশ ইতিমধ্যে ক্ষমতাসীন ফ্রিডম এবং জাস্টিস পার্টির প্রধান সাদ আল-কাতাতনি এবং মুসলিম ব্রাদারহুডের ডেপুটি সুপ্রিম গাইড রাশাদ বায়োমিকে গ্রেপ্তার করেছে।মুরসির পতনের পর আরব লিগের প্রধান আমর মুসা বলেন, ‘মুরসির পতনের পর মিসরের নতুন সরকারের জন্য “এখন” আলোচনা শুরু হবে। সরকার এবং সবকিছুর মধ্যে সমন্বয় সাধনের জন্য এখন আলোচনা শুরু হবে।’গত বছর প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে মুরসির কাছে হেরেছিলেন মুসা। তিনি বলেন, ‘মুরসির শাসন শেষ।’ মুরসির শাসনামলের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা২৮ নভেম্বর, ২০১১: মিসরে ঐতিহাসিক গণ-অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে সাবেক প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের যুগের অবসানের পর দেশটিতে প্রথমবারের মতো পার্লামেন্ট নির্বাচনে প্রথম দফায় ভোট নেওয়া হয়। ইসলামপন্থী দলগুলো নির্বাচনে দুই-তৃতীয়াংশ আসনে জয়ী হয়। এর মধ্যে অর্ধেক ভোট পায় মুসলিম ব্রাদারহুড।৩০ জুন, ২০১২: নির্বাচনে ৫১ দশমিক ৭ শতাংশ ভোট পেয়ে জয়ী মোহাম্মদ মুরসি প্রেসিডেন্ট হিসেবে শপথ নেন।১২ আগস্ট, ২০১২:মিসরের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ও প্রতিরক্ষামন্ত্রী ফিল্ড মার্শাল হুসেইন তানতাউয়ি ও সামরিক বাহিনীর চিফ অব স্টাফ সামি আনানকে অপসারণ করেন প্রেসিডেন্ট মুরসি। দুই জেনারেলকে বরখাস্ত করার পাশাপাশি মুরসি সামরিক পরিষদের আনা প্রেসিডেন্টের ক্ষমতা খর্বকারী সাংবিধানিক সংশোধনীও বাতিল করেন।২২ নভেম্বর, ২০১২ : প্রেসিডেন্ট মুরসি একাধিক ডিক্রি জারির মাধ্যমে মুরসি একছত্র ক্ষমতার অধিকারী হন। ঘোষণায় বলা হয়েছে, তাঁর ডিক্রি, সিদ্ধান্ত বা জারি করা আইনকে কেউ চ্যালেঞ্জ করতে পারবে না। ঘোষণায় আরও বলা হয়, কোনো আদালত বর্তমান সাংবিধানিক গণপরিষদকে বিলুপ্ত করতে পারবেন না। এ পরিষদ মিসরের নতুন সংবিধান প্রণয়নের কাজ করছিল। তবে ৮ ডিসেম্বর এ ঘোষণা বাতিল করেন মুরসি।১৫ ও ২২ ডিসেম্বর, ২০১২: খসড়া সংবিধানের ওপর প্রথম দফায় গণভোট অনুষ্ঠিত হয়। দ্বিতীয় দফা অনুষ্ঠিত হয় ২২ ডিসেম্বর। খসড়া সংবিধানের পক্ষে ৬৪ শতাংশ ভোট পড়ে।২৪ জানুয়ারি, ২০১৩: ২০১১ সালের হোসিন মোবারকের পতনের দ্বিতীয় বর্ষপূর্তিতে বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনায় এক সপ্তাহে ৬০ জন নিহত হয়।২ জুন, ২০১৩: মিসরের পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ বা শুরা কাউন্সিল এবং নতুন সংবিধান প্রণয়নকারী প্যানেলকে অবৈধ ঘোষণা করে রায় দেন দেশটির সর্বোচ্চ আদালত।৩০ জুন, ২০১৩: মুরসির ক্ষমতা গ্রহণের প্রথম বর্ষপূর্তিতে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে ওঠে মিসর।১ জুলাই, ২০১৩:১ জুলাই, ২০১৩: মুরসিকে পদত্যাগের জন্য এক দিনের সময় বেঁধে দেন তাঁর বিরোধীরা। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে জনগণের দাবি মেনে না নিলে সেনাবাহিনী হস্তক্ষেপ করতে বাধ্য হবে বলে হুঁশিয়ার করা হয়।২ জুলাই, ২০১৩: মিসরের রাজধানী কায়রোতে মুরসির সমর্থক ও বিরোধীপক্ষের কর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষে ১৬ জন নিহত ও ২০০ জন আহত হয়।৩ জুলাই, ২০১৩: সামরিক অভ্যুত্থানের মধ্য দিয়ে দেশটির সেনাপ্রধান আবেদল ফাত্তাহ আল সিসি মুরসিকে সরিয়ে দেন। একই সঙ্গে দেশের সংবিধান স্থগিত করে প্রধান বিচারপতি আদলি মানসুরকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হয়। |
খাগড়াছড়ি জেলার পানছড়ি উপজেলার ফূজগাঙ এলাকায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে সন্ত্রাসীদের ব্রাশফায়ারের দুজন নিহত হয়েছে। এ ছাড়া একজনকে অপহরণ করা হয়েছে।নিহত ব্যক্তিরা হলেন ইউনাইটেড পিপলস ডেমোক্রেটিক ফ্রন্ট (ইউপিডিএফ)-সমর্থিত গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের নেতা সমীরণ চাকমা (৩২) ও জনসংহতি সমিতির (এমএন লারমা) কর্মী ভদ্র চাকমা (৪৫)। তাঁদের লাশ খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। গণতান্ত্রিক যুব ফোরামের সন্তোষ চাকমাকে অপহরণ করা হয়েছে।প্রত্যক্ষদর্শীদের ভাষ্য, আজ সকাল সোয়া আটটার দিকে উপজেলার ফূজগাঙ এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। সমীরণ চাকমা ও সন্তোষ চাকমাকে অপহরণ করে নিয়ে যাচ্ছিল প্রতিপক্ষ। একপর্যায়ে সমীরণ চাকমাকে ব্রাশফায়ার করে সন্ত্রাসীরা। এতে ঘটনাস্থলেই নিহত হন তিনি। এ সময় সেখানে ভদ্র চাকমা গেলে তাঁকে লক্ষ্য করেও ব্রাশফায়ার করা হয়। গুরুতর আহত অবস্থায় খাগড়াছড়ি জেলা হাসপাতালে নেওয়ার পথে তিনি মারা যান।এমএন লারমার পক্ষের অভিযোগ, সন্তু লারমা-সমর্থিত জনসংহতি সমিতির সমর্থকেরা এ ঘটনা ঘটিয়েছে।তবে সন্তু লারমা-সমর্থিত জনসংহতি সমিতির সহ-তথ্য ও প্রচার সম্পাদক সজীব চাকমা এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।এ ব্যাপারে পুলিশের বক্তব্য নেওয়ার চেষ্টা চলছে। |
তিন মাস যেতে না যেতেই আবারও নিষেধাজ্ঞায় পড়তে হলো ইরাককে। বিশ্ব ফুটবল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা জানিয়ে দিয়েছে, দেশজুড়ে চলমান সহিংসতার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো আন্তর্জাতিক প্রীতি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করতে পারবে না ইরাকি ফুটবল অ্যাসোসিয়েশন (আইএফএ)। ফক্সনিউজের খবরে বলা হয়, নিষেধাজ্ঞা আরোপের খবরটা গতকাল বুধবার আইএফএকে জানায় ফিফা। বলা হয়, এপ্রিল থেকে মে—এই তিন মাসে ইরাকজুড়ে সহিংসতায় আড়াই হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়। চলতি জুলাই মাসের প্রথম তিন দিনেই সহিংসতায় নিহত হয় অন্তত ১২৩ জন। আইএফএর কর্মকর্তা নাঈম সাদ্দাম নিষেধাজ্ঞা পাওয়ার খবরটি নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ‘আজ (গতকাল) ফিফার একটা বার্তা আমরা পেয়েছি। বার্তায় বলা হয়েছে, চলমান সহিংসতার কারণে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত কোনো প্রীতি ফুটবল ম্যাচ আয়োজন করতে পারবে না ইরাক। এটা দুঃখজনক।’ গত মার্চে আন্তর্জাতিক প্রীতি ম্যাচ আয়োজনে ইরাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করে নেয় ফিফা। এর কয়েক দিন পরই প্রতিবেশী দেশ সিরিয়াকে নিয়ে একটি প্রীতি ম্যাচ আয়োজন করে ইরাক। তবে তিন মাস যেতে না যেতেই আবারও পড়তে হলো নিষেধাজ্ঞায়। |
২০১১ থেকে ২০১৩। মাত্র দুই বছরের ব্যবধান। এবার মোহাম্মদ মুরসির পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল মিসরের তাহরির স্কয়ার। গতকাল বুধবার রাতে গণবিক্ষোভের মুখে দায়িত্ব গ্রহণের মাত্র এক বছরের মাথায় গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত প্রথম প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মুরসিকে সরিয়ে দিয়েছে সেনাবাহিনী। একই সঙ্গে দেশের সংবিধান স্থগিত করে প্রধান বিচারপতি আদলি মানসুরকে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান করা হয়েছে।গতকাল রাতে জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণে সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসি বলেন, দেশকে বাঁচাতে মুরসিকে সরিয়ে দিয়ে সেনাবাহিনী তাদের ‘ঐতিহাসিক দায়িত্ব’ পালন করেছে। মুরসি ক্ষমতা ভাগাভাগিতে বিরোধীদের দাবি পূরণে ব্যর্থ হয়েছেন। সেনাপ্রধান টেলিভিশনে ভাষণ দেওয়ার সময় মুরসিবিরোধী লাখ লাখ উৎফুল্ল মানুষ রাস্তায় নেমে আসে। তারা স্লোগান দিতে থাকে, ‘জনগণ-সেনাবাহিনী ভাই ভাই।’প্রায় দুই বছর আগে ২০১১ সালে প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পদত্যাগের দাবিতে উত্তাল হয়ে উঠেছিল তাহরির স্কয়ার। ব্যাপক গণবিক্ষোভের মুখে তাঁকে ক্ষমতা ছাড়তে হয়েছিল। তাঁর পদত্যাগের পর বাঁধভাঙা উল্লাস করেছিল মিসরের জনগণ। মুরসিসহ ক্ষমতাসীন ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির কয়েকজন নেতার দেশত্যাগের ওপরও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে সেনাবাহিনী। এর আগে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদসহ রাজধানী কায়রোর গুরুত্বপূর্ণ স্থানগুলোতে ট্যাংক, সাঁজোয়া যানে সজ্জিত সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়।রাষ্ট্রীয় আল-আহরাম পত্রিকায় বলা হয়, স্থানীয় সময় সন্ধ্যা সাতটার দিকে সেনাপ্রধান সিসি প্রেসিডেন্ট মুরসিকে জানিয়ে দেন, তিনি আর মিসরের প্রেসিডেন্ট নেই।সিসি ভাষণে বলেন, দেশের সংবিধান স্থগিত করা হয়েছে। নতুন করে পার্লামেন্ট নির্বাচন এবং আগাম প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সর্বোচ্চ সাংবিধানিক আদালতের প্রধান আদলি মানসুর স্থলাভিষিক্ত হবেন মুরসির। সেনাপ্রধান যখন রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে ভাষণ দিচ্ছিলেন, তখন তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিরোধী জোটের নেতা মোহাম্মদ এল বারাদি, আল-আজহারের প্রধান ও কপটিক গির্জার প্রধান। জনতা মুরসিকে ক্ষমতাচ্যুত করার পক্ষে—এমনটা বোঝাতে এই তিনজনকে সেখানে নেওয়া হয় বলে ধারণা করা হচ্ছে। তবে মুরসির কার্যালয় সেনাবাহিনীর এই উদ্যোগ প্রত্যাখ্যান করে এটিকে ‘অবৈধ’ বলে উল্লেখ করেছে। প্রেসিডেন্টের ফেসবুক ও টুইটারে বলা হয়, দেশের স্বাধীন মানুষ এই ক্ষমতাচ্যুতিকে সুস্পষ্টভাবে প্রত্যাখ্যান করবে। তিনি বেসামরিক-সামরিকসহ সর্বস্তরের মানুষের প্রতি সংবিধান মেনে চলার এবং শান্তিপূর্ণভাবে এই ‘অভ্যুত্থান’ প্রতিহত করার আহ্বান জানান। ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর মুরসিকে কোথায় রাখা হয়েছে, সে সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি। মিসরের রাজনৈতিক সংকট নিরসনে মুরসিকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দিয়েছিল সেনাবাহিনী। গতকাল বিকেলে তা শেষ হয়। সেনাবাহিনীর আলটিমেটামকে কেন্দ্র করে মিসরজুড়ে গতকাল ব্যাপক উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। রাজপথে অবস্থান নেয় সরকার ও বিরোধী উভয় পক্ষের হাজার হাজার কর্মী-সমর্থক। দুই পক্ষের সহিংসতায় গতকাল নিহত হয়েছে অন্তত ১৮ জন।শেষ মুহূর্তে মুরসি অন্তর্বর্তী জোট সরকার গঠনের প্রস্তাব দিয়েছিলেন। এই সরকার আসন্ন পার্লামেন্ট নির্বাচন আয়োজন এবং সংবিধান সংশোধনের জন্য স্বাধীন কমিটি গঠন করবে। তাতেও শেষ রক্ষা হয়নি।গত রোববার মুরসির ক্ষমতা গ্রহণের এক বছর পূর্ণ হয়। সেই দিন থেকে শুরু হয় মুরসিবিরোধী বিক্ষোভ। তাদের অভিযোগ, মুরসি ক্ষমতা কুক্ষিগত করার মাধ্যমে ২০১১ সালের গণ-অভ্যুত্থানের চেতনা বস্তবায়নে ব্যর্থ হয়েছেন।সহিংসতায় নিহত ১৮: রাষ্ট্রীয় টেলিভিশন এবং স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র জানান, প্রেসিডেন্ট মুরসির সমর্থকেরা গতকাল কায়রো বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের বাইরে মিছিল বের করে। এ সময় বন্দুকধারীরা গুলি চালালে অন্তত ১৮ জন নিহত হয়।নিরাপত্তা বাহিনীর সূত্র জানায়, মুরসিপন্থীরা নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘাতে জড়িয়ে পড়ে। এ ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগ ইসলামপন্থী।সেনাবাহিনীর আলটিমেটাম: মিসরে গণবিক্ষোভের মুখে দীর্ঘ তিন দশকের প্রেসিডেন্ট হোসনি মোবারকের পতনের পর এক বছর আগে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন মুরসি। এরপরই নিজের ক্ষমতা বাড়াতে তিনি কিছু পদক্ষেপ নেন। এতে ক্ষুব্ধ হয় দেশের মানুষ। আবার দানা বাঁধতে থাকে ক্ষোভ। শুরু হয় বিক্ষোভ। মুরসির পদত্যাগের দাবিতে সম্প্রতি ওই বিক্ষোভ ব্যাপক আকার ধারণ করে। এ অবস্থায় গত সোমবার একটি বিবৃতি দেয় সেনাবাহিনী। এতে সংকট সমাধানে সরকার ও বিরোধী পক্ষকে ৪৮ ঘণ্টা সময় বেঁধে দেওয়া হয়। সমাধানে পৌঁছাতে না পারলে মুরসিকে পদত্যাগ করতে বলা হয়। বলা হয়, তা না হলে সেনাবাহিনী পদক্ষেপ নেবে।সেনাপ্রধান আবদেল ফাত্তাহ আল-সিসির বরাত দিয়ে একটি বিবৃতিতে বলা হয়, ‘সন্ত্রাসী, চরমপন্থী ও গোঁড়াদের হাত থেকে দেশ ও দেশের মানুষকে রক্ষা করতে আমাদের জীবন উৎসর্গের শপথই আমরা নিয়েছি।’ এর আগে গতকাল দুপুরে বৈঠকে করেন সেনাবাহিনীর শীর্ষস্থানীয় কর্মকর্তারা। বৈঠকের কিছুক্ষণ পর কায়রোয় রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সদর দপ্তরে যায় সেনাবাহিনীর দুটি সাঁজোয়া যান। টেলিভিশন ভবন থেকে বের করে দেওয়া হয় কর্মকর্তা-কর্মচারীদের। সেনাবাহিনীর ঘনিষ্ঠ একটি সূত্র জানায়, সিদ্ধান্ত নেওয়ার আগে সেনাপ্রধান জেনারেল সিসি গতকাল এল বারাদিসহ বিরোধী বিভিন্ন পক্ষের নেতাদের সঙ্গেও বৈঠক করেন। ওই বৈঠকে সুন্নি মুসলমান ও খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের নেতাসহ ক্ষমতাসীন দল ফ্রিডম অ্যান্ড জাস্টিস পার্টির প্রতিনিধিও উপস্থিত ছিলেন। |
খাদ্যে ক্ষতিকর মাত্রায় রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ন্ত্রণে আইন হচ্ছে ও কর্তৃপক্ষ গঠিত হয়েছে। ভেজাল চিহ্নিত করার পরীক্ষাগার হয়েছে। তার জন্যও একটা কর্তৃপক্ষ হয়েছে। কেনা হচ্ছে ভেজাল চিহ্নিত করার যন্ত্র। কিন্তু এত উদ্যোগ থাকলেও রাসায়নিকের মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা যাচ্ছে না। বাংলাদেশ ব্যাংকের হিসাব অনুযায়ী, গত বছর দেশে শিল্প খাতে চাহিদার তুলনায় চার গুণ বেশি ফরমালিন আমদানি হয়েছে। শিল্প খাতে ফরমালিনের চাহিদা ৪০ থেকে ৫০ টন। কিন্তু গত অর্থবছরে ২০৫ টন ফরমালিন আমদানি হয়েছে। বাড়তি ফরমালিন খাদ্যে ব্যবহূত হয়েছে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষ করে, মাছ, ফলমূল ও সবজিতে ফরমালিনের ব্যবহার নিয়ে নানা আশঙ্কা তৈরি হয়েছে। গত মার্চে পরিবেশ বাঁচাও আন্দোলনের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে, বাজারে বিক্রি হওয়া ৯৫ শতাংশ আমে ফরমালিন ব্যবহূত হচ্ছে।সরকারের রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের (আইইডিসিআর) পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, খাদ্যে রাসায়নিকের ব্যবহার বেড়ে যাওয়ায় উচ্চ রক্তচাপ, চর্ম ও হূদেরাগের পাশাপাশি যকৃতের সমস্যা বেড়ে গেছে। সম্প্রতি আলসার রোগে আক্রান্ত মানুষের সংখ্যাও বাড়ছে। কিন্তু খাদ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিকের ব্যবহার নিয়ে এখন পর্যন্ত কোনো সরকারি বা বেসরকারি সংস্থার সামগ্রিক গবেষণা নেই। ছয়টি সরকারি সংস্থা তাদের পরীক্ষাগারে ছয় পদ্ধতিতে খাদ্যদ্রব্যে রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি পরীক্ষা করে থাকে। বিএসটিআই, বাংলাদেশ বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পরিষদ (বিসিএসআইআর), বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বারি), পরিবেশ অধিদপ্তর, জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর, ভোক্তা-অধিকার সংরক্ষণ অধিদপ্তরের নিজস্ব খাদ্য ও পানীয় পরীক্ষার পদ্ধতি আছে।কিন্তু ব্যবসায়ীরা কোন সংস্থায় পরীক্ষা করে নিশ্চিত হবেন, খাদ্যে ক্ষতিকর রাসায়নিক পদার্থ মেশানো হয়েছে কি না, তা সরকার থেকে নির্ধারণ করে দেওয়া হয়নি। কোনো একক স্বীকৃত পদ্ধতি না থাকলেও সরকারের তিনটি সংস্থা আলাদাভাবে ভেজালবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে।এ ব্যাপারে রোগতত্ত্ব, রোগনিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের পরিচালক মাহমুদুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, সরকারি কোনো সংস্থার পরীক্ষাগারে খাদ্যে ব্যবহূত হওয়া ফরমালিনের পরিমাণ নিশ্চিত হওয়া যায় না। খাদ্যে রাসায়নিকের ব্যবহার পরীক্ষার দায়িত্ব একক কোনো প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া উচিত।ভোক্তা-অধিকার অধিদপ্তর, বিএসটিআই ও র্যাব ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে বাজারে ভেজালবিরোধী অভিযান চালাচ্ছে। তারা খাদ্যে রাসায়নিকের ব্যবহার চিহ্নিত করে খুচরা ব্যবসায়ীদের শাস্তি দিচ্ছে। কিন্তু বিভিন্ন গবেষণা ও সংশ্লিষ্টদের পর্যবেক্ষণে দেখা গেছে, খাদ্যে মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহার সবচেয়ে বেশি হয় উৎপাদক ও পাইকারি পর্যায়ে। এই দুই ক্ষেত্রে রাসায়নিকের ব্যবহার রোধে সরকারি উদ্যোগ নেই বললেই চলে।খাদ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বিশ্বের বেশির ভাগ দেশেই নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিত করতে খাদ্য ও ওষুধবিষয়ক একটি কেন্দ্রীয় সংস্থা রয়েছে। তারা খাদ্যে ভেজাল বা মাত্রাতিরিক্ত রাসায়নিকের ব্যবহারের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। তারা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত একক পদ্ধতি ব্যবহার করে খাদ্যে রাসায়নিক পরীক্ষা করে থাকে। ওই সংস্থার অনুমোদন পাওয়া খাদ্যকে নিরাপদ বলে গণ্য করা হয়।চলতি সপ্তাহে নিরাপদ খাদ্য আইন-২০১৩ মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে। এই আইন প্রণয়ন ও বাস্তবায়ন প্রক্রিয়ার কেন্দ্রে রয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়। খসড়ায় বলা হয়েছে, আইনটি বাস্তবায়নের জন্য আলাদা একটি কর্তৃপক্ষ করা হবে। কিন্তু ভেজালবিরোধী বা খাদ্যে রাসায়নিকের ব্যবহারের বিরুদ্ধে কার্যক্রম পরিচালনাকারী অন্য সরকারি সংস্থা ও পরীক্ষাগারগুলোর সঙ্গে নতুন এই সংস্থার কাজের সমন্বয় কীভাবে হবে, তা খসড়ায় বলা হয়নি।সরকারের মন্ত্রণালয়গুলোর জন্য যে কার্যবিধি বা এলোকেশন অব বিজনেস করা আছে, তাতে খাদ্য মন্ত্রণালয় শুধু দানাদার খাদ্যমান ও সরবরাহের বিষয়টি দেখবে। আর খাদ্যকেন্দ্রিক রোগবালাইয়ের বিষয়টি দেখবে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়। আবার পানির গুণগত মানের বিষয়টি দেখে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়। ফলে নতুন আইন বাস্তবায়নের মৌলিক ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন উঠছে।বিশ্ব খাদ্য ও কৃষি সংস্থার (এফএও) সহায়তায় সরকার ২২ কোটি টাকা ব্যয়ে খাদ্যে রাসায়নিকের পরিমাণ চিহ্নিত করার একটি পরীক্ষাগার স্থাপন করেছে। কিন্তু এক বছর হয়ে গেলেও জনবল নিয়োগ না হওয়ায় পরীক্ষাগারটি চালু হয়নি। পরীক্ষাগারের প্রধান শাহ মনিরুজ্জামান প্রথম আলোকে বলেন, বিশ্বমানের এই পরীক্ষাগারটি চালু করার জন্য এখন পর্যন্ত জনবল নিয়োগ-প্রক্রিয়া শেষ হয়নি।কিন্তু এই পরীক্ষাগারটি স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের অধীনে মহাখালীতে স্থানীয় সরকারের অধীন জনস্বাস্থ্যের জায়গায় স্থাপন করা হয়েছে। নতুন আইন কার্যকর হলে বাস্তবায়নকারী সংস্থা হবে খাদ্য মন্ত্রণালয়। তখন এই গবেষণাগারটি কার অধীনে থাকবে, তা নিয়েও প্রশ্ন দেখা দিয়েছে।মাহমুদুর রহমান মনে করেন, নিরাপদ খাদ্যের জন্য এসব উদ্যোগকে একটা ছাতার নিচে নিয়ে আসা উচিত। সেখানে কেন্দ্রীয় পরীক্ষাগার থাকবে এবং তারাই বলবে কোনো খাদ্য নিরাপদ কি অনিরাপদ। |
পুরান ঢাকার বাদামতলিতে ঢাকা মহানগর ফল আমদানি ও আড়তদার ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সাধারণ সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলামের আড়তের উল্টোদিকে লেখা—এটি একটি ‘ফরমালিনমুক্ত’ বাজার। গত ২৩ জুন সকালে গিয়ে তাঁর আড়তে দেশি-বিদেশি ফলের পাইকারি বেচাকেনা দেখা গেলেও ফরমালিন পরীক্ষা করতে দেখা গেল না। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানালেন, ফরমালিন পরীক্ষার যন্ত্রটি সমিতির কার্যালয়ের ড্রয়ারেই থাকে। গত বছরের সেপ্টেম্বর থেকে গত এপ্রিল পর্যন্ত রাজধানীর নয়টিসহ দেশের মোট ১৩টি বাজারকে ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা করে শিল্প ও বণিক সমিতি ফেডারেশন (এফবিসিসিআই)। রাজধানীর বাজারগুলো হলো মালিবাগ বাজার, শান্তিনগর বাজার, মহাখালী বাজার, গুলশান-২ বাজার, মোহাম্মদপুর টাউনহল বাজার, মিরপুর-১ বাজার, উত্তরা-৬ বাজার, কাপ্তানবাজার ও বাদামতলী ফলের আড়ত। ঢাকার বাইরের চার বাজার লালমনিরহাট, রংপুর, ময়মনসিংহ ও মানিকগঞ্জে। এফবিসিসিআই বাজারগুলোতে ফরমালিন পরীক্ষার যন্ত্র দিয়েছে।‘ফরমালিনমুক্ত’ কাপ্তানবাজার, শান্তিনগর বাজার, মালিবাগ বাজার, মহাখালী বাজার, উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর বাজার, বাদামতলী বাজার, মিরপুর ১ নম্বর বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, বাজারগুলোতে ভোরে পাইকারি পণ্য আসে। খুচরা বিক্রেতারা মাছ ও ফলের পশরা সাজিয়ে বসে। আর ক্রেতারা পণ্য কেনেন। কোনো বাজারই কোনো পর্যায়েই ফরমালিন পরীক্ষার দৃশ্য চোখে পড়েনি।সাধারণ ক্রেতারা বড় ব্যানারে টাঙানো ‘ফরমালিনমুক্ত বাজার’ লেখার দিকে তাকিয়ে রীতিমতো উপহাস করেন। এই বাজারগুলো যে ফরমালিনমুক্ত হয়নি, সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট (বিএসটিআই) তার প্রমাণও পেয়েছে। গত ২৭ এপ্রিল বাদামতলী বাজারটিকে ফরমালিনমুক্ত ঘোষণা করা হয়। এর প্রায় এক মাস পর বাংলাদেশ স্ট্যান্ডার্ড অ্যান্ড টেস্টিং ইনস্টিটিউট বাজারের ২০টি দোকানের তিনটি পণ্যে ফরমালিন পায়। তিনটি দোকানকে ৫০ হাজার করে মোট এক লাখ ৫০ হাজার টাকা জরিমানা ও ৩০০ কেজি আম ধ্বংস করা হয়।‘ফরমালিনমুক্ত’ কাপ্তানবাজার কমিটিকে এফবিসিসিআইয়ের দেওয়া ফরমালিন পরীক্ষার যন্ত্রটি থাকে মাছ বাজারের পাশে তানিয়া স্টোরে। বাজারে গিয়ে দেখা গেল, তখন মাছ কেনাবেচা চলছে। ফরমালিন পরীক্ষা হয় কি না জানতে চাইলে, তানিয়া স্টোরের মালিক আফরোজ খান দাবি করেন, প্রতিদিন সকালে ফরমালিন পরীক্ষা করা হয়। তদারকি করেন কাপ্তানবাজার ব্যবসায়ী ফোরামের সভাপতি আবদুল মান্নান।সরেজমিনে গত ২৩ জুন সকালে বাজারে গিয়ে সকাল ছয়টা ৪৫ মিনিট থেকে নয়টা ১৫ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান করে দেখা যায়, আড়তগুলোতে মাছ আসছে ও নিলামে বিক্রয় হচ্ছে। খুচরা বিক্রেতারা মাছ বিক্রয় করছেন পাশের খুচরা বাজারে। ফরমালিন পরীক্ষার কোনো কার্যক্রম দেখা গেল না। জানতে চাইলে ব্যবসায়ী ফোরামের সভাপতি আবদুল মান্নানও নিয়মিত ফরমালিন পরীক্ষার দাবি করেন। তবে বলেন, ‘মূলত ক্রেতার সন্দেহ বা অভিযোগ হলে পরীক্ষা করি। ফরমালিন থাকলে তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা নিই।’ শান্তিনগর বাজার ফরমালিনমুক্ত ঘোষিত হয় গত বছরের ১ নভেম্বর। গত ২৪ জুন সকাল সাতটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত বাজারে অবস্থান করে দেখা গেল, ক্রেতা-বিক্রেতারা ব্যস্ত কেনাবেচায়। ফরমালিন পরীক্ষা কোনো কিছু নজরে এল না। মাছ বাজারের পাশে শান্তিনগর বাজার মৎস্য ব্যবসায়ী বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের সিরাজুল ইসলাম জানান, এই বিষয়টি আমিনবাগ কো-অপারেটিভ মার্কেট সোসাইটি লিমিটেডের সভাপতি হাবিবুর রহমান তদারক করেন। হাবিবুর রহমানের দাবি, ‘আমরা নিয়মিতভাবে পরীক্ষা করি। তবে পরীক্ষার লোক একজন হওয়ায় ঠিকভাবে হয় না। আরও কয়েকটি যন্ত্র ও পর্যাপ্ত লোক পেলে ভালোভাবে হবে।’ মালিবাগ বাজারে গত ২৬ জুন সকাল সাতটা থেকে সাড়ে নয়টা পর্যন্ত অবস্থান করে দেখা যায়নি ফরমালিন পরীক্ষার কোনো আয়োজন। খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ফরমালিন পরীক্ষার যন্ত্রটি থাকে মালিক সমিতির তত্ত্বাবধানে। বাজার মালিক সমিতির কার্যালয় তখন বন্ধ ছিল। রুই মাছ কিনে ফেরার পথে মালিবাগের বাসিন্দা তারেকুল হাসান বলেন, ‘নিয়মিত এখানে বাজার করি। ফরমালিন পরীক্ষা করতে দেখিনি।’ মাছ বিক্রেতা মো. সোহাগ বলেন, মাস তিনেক আগে একদিন ফরমালিনের পরীক্ষা হয়েছিল।’ মহাখালী বাজার সরেজমিনে যাওয়া হয় গত ২৭ জুন বেলা সোয়া ১১টায়। বেলা একটা পর্যন্ত থেকে বাজারের কোথাও ফরমালিন পরীক্ষার যন্ত্রটি দেখা যায়নি। মহাখালী বাজার ব্যবসায়ী সমিতির সাধারণ সম্পাদক আবদুল গাফ্ফার বলেন, যন্ত্রটি সমিতির কার্যালয়ে আছে। লোকবল সংকটের কারণে নিয়মিত পরীক্ষা করা সম্ভব হয় না। এফবিসিসিআইয়ের দেওয়া প্রশিক্ষণও পর্যাপ্ত নয় বলে অনুযোগ করলেন তিনি। উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টরের বাজারে গত ২৭ জুন দুপুর থেকে বিকেল পর্যন্ত থেকে ফরমালিন পরীক্ষার বিষয়টি দেখা যায়নি। যন্ত্রটি পাওয়া যায় আজমপুর উত্তরা ৬ নম্বর সেক্টর নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রবাদি ক্রেতা-বিক্রতা বহুমুখী সমবায় সমিতি লিমিটেডের মনোনীত ব্যক্তি লালুর কাছে। লালুর দাবি, প্রতিদিন বাজারে মাছ আসার সময় ফরমালিন পরীক্ষা হয়।কিন্তু সদ্য মাছ কিনে ফেরা স্থানীয় বাসিন্দা মো. মাসুদ মিয়া বললেন, ‘এ ধরনের পরীক্ষা এ বাজারে হয় না। নিয়মিত এখানে বাজার করলেও ফরমালিন পরীক্ষার বিষয়টি দেখিনি।’সমিতির সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বলেন, ‘প্রতিদিন পরীক্ষা হয় বাজারে মাছ ঢোকার সময়। এর পরও ক্রেতা অভিযোগ করলে দায়িত্বে থাকা বিল্লাল হোসেন বা লালু পরীক্ষা করে।’জানতে চাইলে এফবিসিসিআইয়ের সহসভাপতি হেলাল উদ্দিন বলেন, ‘আমাদের নেওয়া ফরমালিনমুক্ত বাজারের কার্যক্রম মূলত সচেতনতা তৈরির জন্য। সরকারি যথাযথ ব্যবস্থাপনা ছাড়া এ বিষয়ে সফলতা আনা সম্ভব নয়।’ |
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনের শুরু থেকেই বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন জাতীয় পার্টির (জাপা) স্থানীয় নেতা-কর্মীরা। গতকাল বুধবার বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও হেফাজত যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে বিএনপির প্রার্থীকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে।তবে জাপার কেন্দ্র থেকে বলা হয়েছে, এই নির্বাচনে তারা কাউকে সমর্থন দেয়নি। দলের সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী দুই মেয়র প্রার্থী জাপার চেয়ারম্যান হুসেইন মুহম্মদ এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দোয়া চেয়েছেন। তবে এরশাদ কাউকে সমর্থন দেওয়ার কথা বলেননি। আর এই নির্বাচনে জাপার সমর্থিত কোনো প্রার্থী না থাকায় দলীয় নেতা-কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের পছন্দমতো যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন। কিন্তু কেন্দ্রের নির্দেশ ছাড়া দলের নামে কেউ কোনো প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন দিতে পারেন না।জাপার সমর্থন নিয়ে আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় পর্যায়ের নেতাদের মধ্যেও মতের ভিন্নতা রয়েছে। আর কাকে সমর্থন দেওয়া হবে তা নিয়েও জাপার স্থানীয় নেতা-কর্মীদের মধ্যে রয়েছে ভিন্নতা।জাপার সমর্থন নিয়ে এমন টানাহেঁচড়া হলেও দলটির ভোট যে অনেক বেশি তা বলা যাবে না। জাপা দাবি করে, গাজীপুরে দুই থেকে আড়াই লাখ পোশাকশ্রমিক রয়েছেন, যাঁদের অধিকাংশের বাড়ি রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধা এলাকায় এবং এঁরা জাপার সমর্থক। তবে ভোটের হিসাবে দেখা যায়, ২০০১ সালের জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলটি গাজীপুরের চারটি আসন মিলিয়ে প্রায় ৫৫ হাজার ভোট পেয়েছিল। আর সিটি করপোরেশন এলাকা গোটা জেলার চার ভাগের এক ভাগ। ফলে দলটির গড় ভোট ১৪ হাজারের বেশি হওয়ার কথা নয়।১৯৯১, ’৯৬ ও ২০০১ সালে জাপা এককভাবে জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়েছিল। ভোটের হিসাবে দেখা যায়, ’৯১ সাল থেকে শুরু করে প্রতিবারই দলটির ভোট কমেছে। ২০০১ সালে গাজীপুর-১ আসন থেকে দলের প্রার্থী আফতাব উদ্দিন আহমেদ আট হাজার ৯৪১ ভোট, গাজীপুর-২ থেকে কাজী মাহমুদ হাসান ৩৮ হাজার ২০২, গাজীপুর-৩ থেকে আশরাফ খান ছয় হাজার ৪৩৮ এবং গাজীপুর-৪ থেকে মোস্তাফিজুর রহমান এক হাজার ২৭০ ভোট পেয়েছিলেন। জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম প্রথম আলোকে বলেন, জাপার ভোট যা-ই থাকুক না কেন, তারা মহাজোটের বড় শরিক দল। তাদের সমর্থনে প্রমাণিত হলো, তারা এই সরকারের সঙ্গে থাকতে চায় না। তাদের এ সিদ্ধান্ত ভোটারদের মধ্যে অবশ্যই প্রভাব ফেলবে।গতকাল দুপুরে বিএনপি-সমর্থিত মেয়র প্রার্থী এম এ মান্নানের পক্ষে ভোট চেয়ে যৌথ সংবাদ সম্মেলন করে গাজীপুর বিএনপি, জাপা ও হেফাজতে ইসলাম। মান্নানের চান্দনা চৌরাস্তার নির্বাচনী ক্যাম্পে আয়োজিত ওই সংবাদ সম্মেলনে জেলা জাপার সাধারণ সম্পাদক নূরুল ইসলাম বিএনপির প্রার্থী এম এ মান্নানের প্রতি আনুষ্ঠানিক সমর্থন ঘোষণা করেন।জানতে চাইলে নূরুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘এটি সত্যি। আমাদের নেতা-কর্মীরা আগেই বিএনপির পক্ষে কাজ করছিলেন। আমরা সংবাদ সম্মেলন করে আমাদের অবস্থান জানিয়েছি।’এদিকে জেলা আওয়ামী লীগের নেতারা বলছেন, জাপার সমর্থন না পেলেও তাঁরা হতাশ নন। গাজীপুরে দলটির এমন ভোট নেই যে, তাদের সমর্থন চাইতে হবে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম সংবাদ সম্মেলন করে বলেন, জাপা সমর্থন না দিলেও কিছু যায় আসে না। কারণ, গাজীপুর আওয়ামী লীগের ঘাঁটি।তবে নির্বাচন পরিচালনা কমিটির সমন্বয়ক আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেছেন, গাজীপুর পৌর ও টঙ্গী জাপার একটি অংশ আওয়ামী লীগের সঙ্গে আছে।জাপা সূত্রে জানা গেছে, পৌর জাপার সভাপতি মনোয়ার হোসেন ও টঙ্গীর কয়েকজন নেতা আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। এ বিষয়ে জানতে চাইলে মনোয়ার হোসেন বলেন, নিজের একক ইচ্ছায় তিনি আওয়ামী লীগের প্রার্থীর পক্ষে কাজ করছেন। তিনি আজ সংবাদ সম্মেলন করে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আজমত উল্লা খানকে সমর্থন দেওয়ার কথা ঘোষণা করবেন বলে জানান।এ নির্বাচনে জাপার প্রার্থী হয়েছিলেন দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও জেলার সভাপতি কাজী মাহমুদ হাসান। তিনি প্রার্থিতা প্রত্যাহার করার পর আওয়ামী লীগের নেতারা তাঁর সঙ্গে দেখা করে সমর্থন চাইলেও তিনি দেননি। এরপর যোগাযোগমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, স্থানীয় সরকার প্রতিমন্ত্রী জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেও এরশাদের সঙ্গে বৈঠক করে তাঁর দলের সমর্থন চান। কিন্তু তাতেও লাভ হয়নি। |
দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে রেখে ৫৩টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। গতকাল বুধবার বিকেলে পুনর্নির্ধারিত সীমানা গেজেট আকারে প্রকাশের জন্য ছাপাখানায় পাঠানো হয়েছে।গতকাল নির্বাচন কমিশনের বৈঠকে এই সীমানা চূড়ান্ত করা হয়। তুলনামূলকভাবে সবচেয়ে বেশি পরিবর্তন এসেছে নারায়ণগঞ্জ, যশোর, পিরোজপুর, পটুয়াখালী, কুড়িগ্রাম, নরসিংদী, ব্রাহ্মণবাড়ীয়া, কুমিল্লা ও চট্টগ্রামে।বৈঠক শেষে প্রধান নির্বাচন কমিশনার কাজী রকিব উদ্দীন আহমদ সাংবাদিকদের বলেন, কমিশন মোট আসনের মাত্র ১৭ শতাংশে পরিবর্তন এনেছে। নির্বাচন কমিশন গত ৭ ফেব্রুয়ারি খসড়া আকারে ৮৯টি আসনের সীমানা বিন্যাস করে গেজেট প্রকাশ করে। ২৩ এপ্রিল থেকে ১২ মে পর্যন্ত কমিশনের প্রস্তাবিত সীমানার ওপর শুনানি অনুষ্ঠিত হয়। শুনানিতে বিভিন্ন এলাকার জনপ্রতিনিধিদের দাবি-আপত্তি বিবেচনায় নিয়ে গতকাল ৫৩টি আসনের সীমানা নতুন করে বিন্যাসের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। কমিশন সচিবালয় সূত্র জানায়, প্রাথমিকভাবে ৮৯টি আসন নতুন করে বিন্যস্ত করা হলেও গতকাল পর্যন্ত ৯৪টি আসনকে বিবেচনায় নিয়ে শেষ পর্যন্ত ৫৩টি আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করা হয়। সীমানা অপরিবর্তিত থাকলেও ঢাকা ও চট্টগ্রামের বেশ কয়েকটি আসনের নম্বর পরিবর্তিত হয়েছে।কমিশনের প্রস্তাবে ঢাকার ১৬টি আসন নতুন করে বিন্যাসের সিদ্ধান্ত থাকলেও শেষ পর্যন্ত পরিবর্তন এসেছে ঢাকা-১৪ ও ঢাকা-১৯ আসনে। বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে নারায়ণগঞ্জে। সোনারগাঁও উপজেলা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩ এবং ফতুল্লা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসন গঠন করা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে কমিশন তাদের প্রস্তাবিত বিন্যাসকে আমলে নেয়নি। কমিশন নারায়ণগঞ্জ সিটির বন্দর থানা ও সোনারগাঁও নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৩, ফতুল্লা থানার সঙ্গে আলীরটেক ও গোগনগর ইউনিয়ন নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৪ এবং সিটির সদর থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা নিয়ে নারায়ণগঞ্জ-৫ আসন গঠনের প্রস্তাব করেছিল। প্রস্তাবিত এই তিন আসনের ভোটার সংখ্যার হিসাব ছিল যথাক্রমে তিন লাখ ৪১ হাজার ৬২০, চার লাখ ৫১ হাজার ২৪০ এবং তিন লাখ ৩৮ হাজার ৪৮২। কিন্তু বর্তমানে যা করা হয়েছে, তাতে নারায়ণগঞ্জ-৪ আসনের ভোটার সংখ্যা দাঁড়াবে ছয় লাখের বেশি।নারায়ণগঞ্জের সাবেক সাংসদ বিএনপির কেন্দ্রীয় সহকারী আইনবিষয়ক সম্পাদক তৈমুর আলম খন্দকার প্রথম আলোকে বলেন, ক্ষমতাসীন দলের প্রার্থীকে জেতানোর জন্য কমিশন পরিকল্পিতভাবে এই সীমানা তৈরি করেছে।অভয়নগর ও কেশবপুর উপজেলা এবং মনিরামপুর উপজেলার মনোহরপুর ইউনিয়ন নিয়ে বিদ্যমান যশোর-৬ আসনটি লম্বালম্বিভাবে ১৩৫ কিলোমিটার দীর্ঘ হওয়ায় কমিশন এ আসনটি পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নেয়। এটিতে পরিবর্তন আনতে গিয়ে যশোর-৩, যশোর-৪, যশোর-৫ ও যশোর-৬ আসনে ভাঙচুর করতে হয়েছে।পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর-১, কাউখালী, ভাণ্ডারিয়া ও জিয়ানগর উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর-২ এবং মঠবাড়ীয়া উপজেলা নিয়ে পিরোজপুর-৩ আসন গঠন করা হয়েছে। এই তিনটি আসনেও বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। প্রথম আলোর পিরোজপুর অফিস জানায়, নতুন করে আসন বিন্যাস করায় পিরোজপুর সদর, জিয়ানগর, ভাণ্ডারিয়া ও কাউখালীর বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষ সন্তোষ প্রকাশ করেছে।খসড়ায় কুমিল্লার-৬, ৭, ৮ ও ১০ আসন নতুন করে বিন্যাসের প্রস্তাব করা হয়। এ নিয়ে আওয়ামী লীগ সাংসদ আ হ ম মুস্তফা কামাল ও নাছিমুল চৌধুরী আপত্তি জানান। শেষ পর্যন্ত কমিশন এই চারটি আসনে পরিবর্তন আনলেও খসড়া প্রস্তাবের সঙ্গে চূড়ান্ত বিন্যাসের যথেষ্ট পার্থক্য রয়েছে। |
কিশোরগঞ্জ-৪ (ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম) আসনের উপনির্বাচনে আওয়ামী লীগের প্রার্থী রেজওয়ান আহাম্মদ বিপুল ভোটের ব্যবধানে বিজয়ী হয়েছেন। গতকাল বুধবার এই উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়।অসমর্থিত সূত্রের হিসাব অনুযায়ী, রেজওয়ান পেয়েছেন এক লাখ ৫৩ ভোট। তাঁর একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী বিদ্রোহী প্রার্থী সৈয়দ মহিতুল ইসলাম পেয়েছেন ৫৯ হাজার ৭০ ভোট। তবে রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয় থেকে রাত সোয়া ১২টা পর্যন্ত মোট ১১৮টি কেন্দ্রের মধ্যে ১১৬টি কেন্দ্রের ফলাফল ঘোষণা করা হয়। ওই ফলাফল অনুযায়ী, রেজওয়ান পেয়েছেন ৯৮ হাজার ২৬ ভোট এবং মহিতুল পেয়েছেন ৫৮ হাজার ৯৪৩ ভোট। মিঠামইনের বাহেরচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় (ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৭১৫) ও বৈরাতি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের (ভোটার সংখ্যা এক হাজার ৪৬০) ফলাফল ঘোষণা বাকি আছে।এ বিষয়ে রাতে রিটার্নিং অফিসার মো. জাহিদ হোসেন সাংবাদিকদের বলেন, ‘ওই দুটি কেন্দ্রের ফলাফল নিয়ে প্রিসাইডিং অফিসাররা রওনা দেন। কিন্তু তাঁদের বহনকারী ইঞ্জিনচালিত নৌকা নষ্ট হয়ে যাওয়ায় তাঁরা পৌঁছাতে পারেননি। তাঁদের উদ্ধারে প্রথমে যাওয়া নৌকায়ও সমস্যা দেখা দেয়। পরে আবার নৌকা পাঠানো হয়েছে। ফলাফল পৌঁছালেই ঘোষণা করা হবে।’এ আসনের সাতবারের সাংসদ আবদুল হামিদ রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় আসনটি শূন্য হয়। নৌকা প্রতীক নিয়ে নির্বাচন করা রেজওয়ান রাষ্ট্রপতির বড় ছেলে। দলীয় মনোনয়ন না পেয়ে অষ্টগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের প্রচার সম্পাদক মহিতুল স্বতন্ত্র প্রার্থী হন। তাঁর প্রতীক ফুটবল।বড় কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা ছাড়াই সকাল আটটা থেকে বিকেল চারটা পর্যন্ত এই উপনির্বাচনে ভোট গ্রহণ সম্পন্ন হয়। ১৭টি কেন্দ্রে প্রতিদ্বন্দ্বীর সমর্থকদের বিরুদ্ধে ইচ্ছেমতো সিল মারার ও পোলিং এজেন্ট বের করে দেওয়ার অভিযোগ করেন মহিতুল। পরে ফলাফল প্রত্যাখ্যান করে তিনি বলেন, এ নির্বাচন বহুল আলোচিত মাগুরা নির্বাচনের কারচুপির দৃষ্টান্তকে হার মানিয়েছে।অবশ্য রেজওয়ান নির্বাচন নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন। তাঁর অন্যতম নির্বাচনী সমন্বয়ক ইটনা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. খলিলুর রহমান বলেন, তাঁদের কর্মী-সমর্থকদের আধিপত্য বিস্তারের চেষ্টার অভিযোগ অসত্য। শক্তিশালীদের বিরুদ্ধে দুর্বলেরা সব সময়ই এ জাতীয় অভিযোগ এনে থাকে।রিটার্নিং অফিসার দাবি করেন, নির্বাচন সুষ্ঠু হয়েছে।অসমর্থিত সূত্র অনুযায়ী, উপনির্বাচনে মোট দুই লাখ ৭৯ হাজার ৭১৯ জন ভোটারের মধ্যে এক লাখ ৫৯ হাজার ৮৩৮ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেন। অষ্টগ্রামে রেজওয়ান ২৮ হাজার ৪৭৬ ও মহিতুল ২৬ হাজার ১৭৩ ভোট, ইটনায় রেজওয়ান ৩৭ হাজার ৫৪ ও মহিতুল ২৩ হাজার ৬৭৩ এবং মিঠামইনে রেজওয়ান ৩৪ হাজার ৫২১ ও মহিতুল আট হাজার ৮৭৫ ভোট পেয়েছেন। সৈয়দ মহিতুলের প্রধান নির্বাচন সমন্বয়ক সৈয়দ মোহাম্মদ শাহজাহান দুপুরে প্রথম আলোর কাছে অভিযোগ করেন, ইটনার আটটি, মিঠামইনের চারটি ও অষ্টগ্রামের চারটি কেন্দ্র থেকে তাঁদের এজেন্টদের বের করে দিয়ে ভোট কারচুপি করা হচ্ছে। এ অভিযোগ যাচাই করতে বেলা তিনটার পর ইটনার ওই আট কেন্দ্রের একটি চন্দ্রপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে ফুটবল প্রতীকের এজেন্টদের কেন্দ্রে দেখা যায়নি। ওই কেন্দ্রে ফুটবলের এজেন্ট হিসেবে দায়িত্বপ্রাপ্ত আবদুস সালাম, কামরুল ইসলাম, আবুল কালাম আজাদ ও আবুল হাশেমের সঙ্গে কথা হয় কেন্দ্রের বাইরে। তাঁরা অভিযোগ করেন, পার্শ্ববর্তী করিমগঞ্জ উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোস্তফা ফারুকের নেতৃত্বে নৌকার কর্মী-সমর্থকেরা তাঁদের বের করে দিয়েছেন। অভিযোগ অস্বীকার করে মোস্তফা ফারুক বলেন, ‘আমি সকাল থেকেই ওই কেন্দ্রে ছিলাম। তবে আত্মীয়স্বজনের কাছে ভোট চাওয়ার বাইরে কিছু করিনি।’ভোট গ্রহণ উপলক্ষে এ হাওর এলাকায় কড়া নিরাপত্তাবলয় তৈরি করে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। বেলা পৌনে ১১টার দিকে ইটনার বড়িবাড়ি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, ছোট ছোট নৌকায় করে ভোটাররা কেন্দ্রে আসছেন। ওই কেন্দ্রের মোট ভোটার এক হাজার ৫১৩। ওই সময় পর্যন্ত এক-তৃতীয়াংশ ভোট পড়েছে বলে জানান কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা। এ নির্বাচনী এলাকার বেশির ভাগ ভোটাররাই নৌকায় করে কেন্দ্রে যাতায়াত করেন। মিঠামইনের ঘাগড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে সকাল থেকে ভোটারদের উপস্থিতি ছিল কম। ওই কেন্দ্রের মোট ভোট দুই হাজার ৮২৯। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা বদরুজ্জামান তালুকদার জানান, দুপুর ১২টার মধ্যে ভোট পড়েছে ৩৫০টি। এদিকে একই সময়ের মধ্যে প্রায় ৪০ শতাংশ ভোট পড়ে ইটনার মহেশচন্দ্র শিক্ষা নিকেতন কেন্দ্রে। ওই কেন্দ্রের মোট তিন হাজার ২২৯ ভোটের মধ্যে দুপুর ১২টা পর্যন্ত পড়ে এক হাজার ৩৫০টি। |
দেশের শহরাঞ্চলের ১৪ শতাংশ শিশু অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার শিকার। আর ঢাকা মহানগরে এই হার ২১ শতাংশ। এসব শিশুর শারীরিক সক্রিয়তা কম। অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার অন্যতম কারণ স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর খাদ্যাভ্যাস। স্থূলতার (ওবেসিটি) বিষয়ে দেশের প্রথম জরিপে এই তথ্য পাওয়া গেছে।আয়ের ওপর ভিত্তি করে জরিপে অংশগ্রহণকারী পরিবারগুলোকে পাঁচটি স্তরে ভাগ করা হয়। এর মধ্যে সর্বোচ্চ আয়ের স্তরে থাকা ২০ শতাংশ পরিবারের ৪৪ শতাংশ শিশু অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার শিকার। আর ২৩ শতাংশ শিশুর ওজন স্বাভাবিক। অন্যদিকে সর্বনিম্ন আয়ের স্তরে থাকা ২০ শতাংশ পরিবারে ৪ শতাংশ শিশু এই সমস্যায় ভুগছে। আর ১৭ শতাংশ শিশুর ওজন স্বাভাবিক। শিক্ষিত পরিবারেও এই সমস্যা বেশি। জরিপের ফলে বলা হয়, বাংলাদেশের শিশুরা দুই ধরনের বোঝা বয়ে বেড়াচ্ছে। ৩০ শতাংশের পুষ্টির অভাব আছে, আর ১৪ শতাংশ অতিপুষ্টির শিকার।জাতীয় জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের আর্থিক সহায়তায় আন্তর্জাতিক উদরাময় গবেষণা কেন্দ্র, বাংলাদেশ (আইসিডিডিআরবি) সাতটি সিটি করপোরেশন এলাকায় এই জরিপ করেছে।গতকাল বুধবার আইসিডিডিআরবিতে ‘বাংলাদেশের শহরাঞ্চলের শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে স্থূলতার প্রকোপ এবং খাদ্যাভ্যাস ও শারীরিক সক্রিয়তার ধরন’ শীর্ষক এই জরিপের ফল প্রকাশ করা হয়। এ উপলক্ষে আয়োজিত আলোচনায় দেশের শীর্ষস্থানীয় জনস্বাস্থ্য ও পুষ্টিবিদেরা বলেন, শিশু ও কিশোর-কিশোরীদের মধ্যে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতা দেশে নতুন জনস্বাস্থ্য সমস্যা হিসেবে দেখা দিয়েছে। এর কারণে মানুষ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হয়। হূদেরাগ ও উচ্চরক্তচাপের ঝুঁকি বাড়ে, স্ট্রোকও হতে পারে। হতে পারে হেপাটাইটিস ও বাতে।জরিপের ফল উপস্থাপন করেন আইসিডিডিআরবির সহযোগী বিজ্ঞানী আলিয়া নাহিদ ও সেন্টার ফর কন্ট্রোল অব ক্রনিক ডিজিজের (সিসিসিডি) ব্যবস্থাপক নাজরাতুন নাঈম মোনালিসা। এতে সভাপতিত্ব করেন হার্ট ফাউন্ডেশনের মহাসচিব জাতীয় অধ্যাপক আবদুল মালিক।জরিপের ফলজরিপে ঢাকা, চট্টগ্রাম, খুলনা, রাজশাহী, সিলেট, রংপুর ও বরিশাল সিটি করপোরেশনের ২০৭টি ওয়ার্ডের পাঁচ থেকে ১৮ বছর বয়সী চার হাজার ১০০ শিশু এবং তাদের মায়েদের তথ্য সংগ্রহ করা হয়। জরিপের কাজটি পরিচালিত হয় এ বছরের ১ মে থেকে ১০ জুন পর্যন্ত।জরিপে দেখা গেছে, শিশুরা দিনে বা সপ্তাহে ফুটবল বা ভলিবল খেলার মতো শারীরিক পরিশ্রম কম করে। ৭০ শতাংশ শিশুর স্কুলে বা বাড়ির আশপাশে খেলার মাঠে যাওয়ার সুযোগ আছে। কিন্তু ৪৫ শতাংশ শিশু খেলার মাঠে যায়। শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ৯৪ শতাংশ শিশুর শারীরিক প্রশিক্ষণের ক্লাস আছে। কিন্তু তাতে অংশ নেয় ৬২ শতাংশ শিশু।জরিপে অন্তর্ভুক্ত অর্ধেকের বেশি শিশু সপ্তাহে তিন থেকে চারবার শিঙাড়া, সমুচা, চপ, বেগুনি, পেঁয়াজু খায়। ২০ শতাংশ শিশু সপ্তাহে গড়ে একবার পিৎজা, বারগার, ফ্রাইড চিকেন বা এ ধরনের ফাস্টফুড খায়।জরিপে শিশু পুষ্টির পরিস্থিতিকে কম ওজন, স্বাভাবিক ওজন, অতিরিক্ত ওজন এবং স্থূলতা এই চার ভাগে ভাগ করা হয়েছে। এতে দেখা গেছে, শহরাঞ্চলে ১০ শতাংশ শিশু অতিরিক্ত ওজনের শিকার এবং ৪ শতাংশ শিশু স্থূলতায় ভুগছে। ঢাকা মহানগরে তা যথাক্রমে ১৪ শতাংশ ও ৭ শতাংশ। ঢাকাতেই এই হার সবচেয়ে বেশি। সবচেয়ে কম রংপুরে, সেখানে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূল শিশু যথাক্রমে ৬ শতাংশ ও ১ শতাংশ।অতিরিক্ত ওজন ও স্থূল শিশুদের ৭০ শতাংশের বয়স ৫ থেকে ১২ বছরের মধ্যে। বাকি ৩০ শতাংশের বয়স ১৩ থেকে ১৮ বছরের মধ্যে। তবে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতা ছেলে ও মেয়েদের মধ্যে সমান।শিক্ষিত পরিবারে অতিরিক্ত ওজন ও স্থূল শিশুর সংখ্যা বেশি। এই সমস্যা মা-বাবা দশম শ্রেণীর বেশি পড়াশোনা করেছেন এমন পরিবারের চেয়ে পঞ্চম শ্রেণীর কম পড়াশোনা করা পরিবারে কম।এই জরিপে গ্রামের কোনো তথ্য নেই। তবে আলোচনায় অংশ নিয়ে আইসিডিডিআরবি ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য মো. সোহরাব আলী জানান, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের এক গবেষণায় দেখা গেছে, গ্রামের ৩ শতাংশ শিশু স্থূলতায় ভুগছে।করণীয়জনস্বাস্থ্য পুষ্টি প্রতিষ্ঠানের পরিচালক মো. এখলাসুর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, শিশুদের অতিরিক্ত ওজন ও স্থূলতার প্রকোপ বাড়ছে, এটা বোঝা যাচ্ছিল। কিন্তু নতুন এই জরিপে তার প্রমাণ পাওয়া গেল। তিনি বলেন, জন্মের এক ঘণ্টার মধ্যে শিশুকে শালদুধ দিতে হবে। জীবনের প্রথম ছয় মাস শিশুকে মায়ের দুধ ছাড়া অন্য খাদ্য দেওয়া যাবে না। ছয় মাস পর থেকে মায়ের বুকের দুধের পাশাপাশি বাড়ির তৈরি পরিপূরক খাদ্য দিতে হবে।শিশু বা সব বয়সী মানুষকে শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকার কথা বলছেন বিশেষজ্ঞরা। শিশুদের স্কুলের মাঠে বা পার্কে নিয়মিত খেলায় নামাতে হবে। প্রতিদিন নিয়মিত হাঁটাচলারও পরামর্শ দিয়েছেন তাঁরা। শহরের পার্কগুলো সাধারণের ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত করে গড়ে তোলা এবং নতুন পার্ক ও খেলার জায়গা তৈরি করার কথাও তাঁরা বলেছেন। শিশুরা যেন বেশি সময় ধরে টেলিভিশন না দেখে অথবা ভিডিও গেমস না খেলে, সে ব্যাপারে অভিভাবকদের সতর্ক থাকতে হবে। খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তনের কথাও বলেছেন একাধিক বিশেষজ্ঞ। অতিরিক্ত তেল ও চর্বিযুক্ত খাবার কম খেতে হবে। ফাস্টফুড থেকে শিশুদের দূরে রাখতে হবে। |
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, দেশের শান্তি ও অগ্রগতি এবং সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্যে তাঁর সরকার সব নির্বাচনী অঙ্গীকার বাস্তবায়নে অঙ্গীকারবদ্ধ।গতকাল বুধবার ঢাকা সেনানিবাসে পিজিআর সদর দপ্তরে প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। পিজিআর সদস্যদের যোগ্যতা, পেশাদারি ও নিষ্ঠার প্রশংসা করে তিনি বলেন, তাঁরা বিশ্বস্ততার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘বর্তমান সরকার দিনবদলের সনদ নিয়ে যাত্রা শুরু করে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কমানো, দুর্নীতির বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্থা, জঙ্গি দমন, সুশাসন প্রতিষ্ঠা এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি-সংকট নিরসনের মতো চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করেছে। এসব চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও ইনশা আল্লাহ দেশের অগ্রগতি এবং সাধারণ মানুষের মুখে হাসি ফোটানোর লক্ষ্যে আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সব কিছুই করব।’ এর আগে প্রধানমন্ত্রী পিজিআর সদর দপ্তরে পৌঁছালে তিন বাহিনীর প্রধানেরা এবং পিজিআরের কমান্ড্যান্ট তাঁকে স্বাগত জানান। মন্ত্রিসভার সদস্য, প্রধানমন্ত্রীর প্রতিরক্ষাবিষয়ক উপদেষ্টা, মন্ত্রিপরিষদ সচিব, সশস্ত্র বাহিনী বিভাগের প্রিন্সিপাল স্টাফ অফিসার, প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব এবং পদস্থ সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তারা অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।প্রধানমন্ত্রী কোয়ার্টার গার্ড পরিদর্শন এবং সালাম গ্রহণ করেন। এ ছাড়া তিনি কর্মরত অবস্থায় নিহত পিজিআর সদস্যদের পরিবারবর্গের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী এ উপলক্ষে আয়োজিত প্রীতিভোজে অংশ নেন।রাশিয়া থেকে ১০০ কোটি মার্কিন ডলারের অস্ত্র সংগ্রহের জন্য এযাবৎকালের বৃহত্তম অস্ত্র চুক্তি প্রসঙ্গে শেখ হাসিনা বলেন, ‘এ চুক্তির আওতায় আমরা খুবই কম দামে অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র সংগ্রহ করব।’রানা প্লাজায় ক্ষতিগ্রস্ত আরও ১৪৪ পরিবারকে সহায়তা: প্রধানমন্ত্রী তেজগাঁওয়ে তাঁর কার্যালয়ে সাভারে রানা প্লাজা ধসে নিহত পোশাকশ্রমিকদের আরও ১৪৪টি পরিবারকে তাঁর ত্রাণ ও কল্যাণ তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা দিয়েছেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও বিজিএমইএর নেতারা উপস্থিত ছিলেন। এদিকে আরও সংগঠন ও ব্যক্তি রানা প্লাজা ধসে নিহত ও আহত ব্যক্তিদের আর্থিক সহায়তার জন্য প্রধানমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে চেক হস্তান্তর করেন। কাল লন্ডন যাত্রা: প্রধানমন্ত্রী যুক্তরাজ্য ও বেলারুশে সপ্তাহব্যাপী সরকারি সফরে কাল সকাল নয়টায় লন্ডনের উদ্দেশে ঢাকা ত্যাগ করবেন। প্রথমে তিনি ৪ থেকে ৮ জুলাই যুক্তরাজ্য সফর করবেন। সেখান থেকে তিনি ৮ থেকে ১০ জুলাই বেলারুশ সফর করবেন। তিনি তুরস্কের ইস্তাম্বুল হয়ে ১১ জুলাই বিকেলে দেশে ফিরে আসবেন বলে আশা করা হচ্ছে। |
ওয়াশিংটন টাইমস পত্রিকায় খালেদা জিয়ার নামে প্রকাশিত নিবন্ধ নিয়ে ‘প্যাঁচানোর’ চেষ্টা না করতে সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।গতকাল বুধবার রাজধানীর নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে রিজভী এ আহ্বান জানান। তিনি দাবি করেন, খালেদা জিয়ার নামে ছাপা হওয়া ওই নিবন্ধটি জালিয়াতি ও ষড়যন্ত্রমূলক। নির্বাচনকে প্রভাবিত করতে সরকার এই কৌশল অবলম্বন করেছে। এ ক্ষেত্রে খালেদা জিয়ার সই নকল করা হয়েছে।তাহলে প্রকাশিত হওয়ার পর ওই নিবন্ধনের সমর্থনে বিএনপির একাধিক নেতা বক্তব্য দিয়েছিলেন কেন? আর বিএনপির পক্ষ থেকেও এত দিন কোনো আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানানো হয়নি কেন? সাংবাদিকদের এসব প্রশ্নের জবাবে রিজভী দাবি করেন, ‘শুরু থেকে বিএনপি ওই নিবন্ধের প্রতিবাদ করে আসছে। এখনো করছে। এটা নিয়ে প্যাঁচানোর চেষ্টা করবেন না।’প্রসঙ্গত, গত ৩০ জানুয়ারি ওয়াশিংটন টাইমস-এ ‘দ্য থ্যাঙ্কসলেস রোল ইন সেভিং ডেমোক্রেসি ইন বাংলাদেশ, করাপশন অ্যান্ড স্টিলিং থ্রেটেন আ ওয়ানস ভাইব্রেন্ট নেশন’ শীর্ষক একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয়। ওই নিবন্ধের নিচে লেখকের পরিচিতি হিসেবে লেখা ছিল, ‘বেগম খালেদা জিয়া, সাবেক প্রধানমন্ত্রী, বাংলাদেশ ও বর্তমানে সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা’।গত ২৯ জুন বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া জাতীয় সংসদে বাজেট আলোচনায় বলেন, ওই নিবন্ধ তাঁর নয়।গত মঙ্গলবার রাতে বাংলাদেশের একাত্তর টিভিকে মার্কিন দৈনিকটির নির্বাহী সম্পাদক ডেভিড এস জ্যাকসন বলেন, এজেন্টের মাধ্যমে পাওয়া নিবন্ধটি যে খালেদা জিয়ার—এ ব্যাপারে নিশ্চিত হয়েই তা ছাপা হয়েছে।গাজীপুর নিয়ে অভিযোগ: সংবাদ সম্মেলনে রিজভী আহমেদ অভিযোগ করেন, গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন প্রভাবিত করতে প্রশাসনের বিভিন্ন স্তরের কর্মকর্তাদের ব্যবহার করা হচ্ছে।বিএনপির এই নেতা গাজীপুরে মেয়র পদপ্রার্থী আজমত উল্লার পক্ষে নারায়ণগঞ্জের মেয়র সেলিনা হায়াৎ আইভী প্রচারে অংশ নেওয়ার সমালোচনা করে বলেন, দায়িত্ব পালনরত একজন মেয়র এভাবে প্রচারে অংশ নিতে পারেন না। তিনি অভিযোগ করেন, একটি বিশেষ সংস্থার লোকজন ‘খালেদার হাত থেকে পোশাকশিল্প রক্ষা করো’ শিরোনামে একটি প্রচারপত্র বিলি করছে। |
যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে অগ্রাধিকারমূলক সুবিধা (জিএসপি) বাতিলের দাবি জানিয়ে মার্কিন পত্রিকায় নিবন্ধ লেখার জন্য বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়াকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ। গতকাল বুধবার আওয়ামী লীগের ধানমন্ডির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে দলের পক্ষে মাহবুব উল আলম হানিফ এ মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিএসপি স্থগিতের জন্য খালেদা জিয়া ওয়াশিংটন টাইমস-এ নিবন্ধ লিখেছেন। এর প্রমাণ আছে। দেশের প্রতি শ্রদ্ধা ও জনগণের প্রতি দায়বদ্ধতা থাকলে অবশ্যই বিরোধীদলীয় নেতাকে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।হানিফ বলেন, ‘খালেদা জিয়ার নিবন্ধ লেখার সত্যতা যাচাই করতে আমরা ওয়াশিংটন টাইমস-এর নির্বাহী সম্পাদক ডেভিড জ্যাকসনের সঙ্গে যোগাযোগ করি। তিনি নিবন্ধের বিষয়ে নিশ্চিত করেছেন। আমাদের কাছে সে চিঠিও আছে।’ হানিফ আরও বলেন, খালেদা জিয়ার ওই নিবন্ধ ছাপানোর পর যখন জাতি এর নিন্দা করছিল, তখন বিএনপির নেতা মওদুদ আহমদ বলেছিলেন, খালেদা জিয়ার লেখা সরকারের আঁতে গা লেগেছে, বিরোধীদলীয় নেতা দায়িত্ব নিয়েই নিবন্ধটি লিখেছেন। আর শমসের মুবিন চৌধুরী বলেছিলেন, প্রয়োজনে এমন প্রবন্ধ খালেদা জিয়া আরও লিখবেন। |
স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতা বজায় রেখে যোগ্যতার ভিত্তিতে অধ্যাপক মাহফুজা খানমকে জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের সদস্য হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে বলে গতকাল বুধবার আইন মন্ত্রণালয়ের এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে।আইন মন্ত্রণালয় বলছে, আইন অনুযায়ী জাতীয় সংসদের স্পিকারের নেতৃত্বে গঠিত বাছাই কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যরা নিয়োগ পেয়েছেন। আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ বাছাই কমিটির সদস্য হলেও সদস্য নিয়োগের বিষয়টি সম্পূর্ণ রাষ্ট্রপতির এখতিয়ারভুক্ত। কাজেই সদস্য নিয়োগের ক্ষেত্রে আইনমন্ত্রীর কোনো ভূমিকা নেই। জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের চেয়ারম্যান ও সদস্যদের নিয়োগ সম্পর্কে যে প্রশ্ন তোলা হয়েছে, তা অসত্য ও ভিত্তিহীন। |
আসন্ন পবিত্র রমজান মাসে সারা দেশে গ্যাস-বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক থাকবে বলে সরকার আশা করছে। এ স্বাভাবিক বলতে বর্তমান সময়ের মতো অবস্থাকে বোঝানো হচ্ছে বলে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের সূত্রগুলো জানিয়েছে। পবিত্র রমজানে গ্যাস-বিদ্যুৎ সরবরাহ এ অবস্থায় রাখার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিষয়টি নিয়ে আজ বৃহস্পতিবার মন্ত্রণালয়ে উচ্চপর্যায়ের সভা হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে গতকাল বুধবার সকালে পেট্রোবাংলা, বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড (পিডিবি) ও পেট্রোলিয়াম করপোরেশনের (বিপিসি) ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সভা হয়েছে। সভায় পিডিবি বিদ্যুৎকেন্দ্রে বাড়তি গ্যাস সরবরাহ করতে বললে পেট্রোবাংলা রাজি হয়েছে।সভাসূত্র জানায়, পিডিবিকে বলা হয়েছে, রমজান মাসে বিদ্যুৎকেন্দ্রগুলো অগ্রাধিকারভিত্তিতে গ্যাস পাবে। প্রতিদিন ১০০ থেকে ১১০ কোটি ঘনফুট গ্যাস বিদ্যুৎকেন্দ্রে সরবরাহ করা হবে। বাসা-বাড়িতেও গ্যাসের সমস্যা হবে না। পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন মনসুর সভায় বলেন, রমজানের শুরুতেই দুটি নতুন গ্যাসকূপ তিতাস-২০ ও শ্রীকাইল-৩ উৎপাদনে আসবে। এর ফলে দৈনিক গ্যাস উৎপাদন বাড়বে প্রায় সাড়ে পাঁচ কোটি ঘনফুট। তা ছাড়া প্রতিদিন সর্বোচ্চ চাহিদার সময় সিএনজি স্টেশন, রি-রোলিং ও চুন তৈরির কারখানায় রেশনিং করে গ্যাস সাশ্রয়ের কথাও ভাবা হচ্ছে।সভায় পিডিবির পক্ষ থেকে বলা হয়, রমজান মাসে বিদ্যুৎ পরিস্থিতি স্বাভাবিক রাখতে তেলভিত্তিক কেন্দ্রগুলো সর্বোচ্চ ক্ষমতায় চালানো হবে। এ জন্য জ্বালানি তেল সরবরাহে যাতে বিঘ্ন না ঘটে সে জন্য বিপিসিকে অনুরোধ জানানো হয়। বিপিসির কর্মকর্তারা জানান, এ ব্যাপারে ইতিমধ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। রমজান মাসে পিডিবি দিনের বেলায় সর্বোচ্চ চাহিদার সময় পাঁচ হাজার ৫০০ মেগাওয়াট; সেহিরর সময় ছয় হাজার ১০০ মেগাওয়াট এবং সান্ধ্যকালীন সর্বোচ্চ চাহিদার সময় ছয় হাজার ৫০০ মেগাওয়াট উৎপাদনের লক্ষ্য নির্ধারণ করেছে। পিডিবি বলছে, এর ফলে লোডশেডিং হলেও তা সহনীয় পর্যায়ে থাকবে। তবে বিতরণব্যবস্থার সীমাবদ্ধতা এবং বিভ্রাটের কারণে কখনো কখনো কোনো কোনো এলাকায় লোডশেডিং বেশি হতে পারে। গ্রাহকেরা বিদ্যুৎ ব্যবহারে সাশ্রয়ী হলে এমন পরিস্থিতি এড়ানো যাবে। গ্যাস সাশ্রয়ের জন্য প্রথম রমজান থেকে ২৬ রমজান পর্যন্ত প্রতিদিন সিএনজি স্টেশনগুলো বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। এর পর থেকে ঈদের দিন পর্যন্ত স্টেশনগুলো ২৪ ঘণ্টা খোলা রাখা যাবে, যাতে ঈদের আগে মানুষের সমস্যা না হয়। ঈদের পর আবার প্রতিদিন বিকেল পাঁচটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকবে। তবে চট্টগ্রামে তখনো বেলা তিনটা থেকে রাত নয়টা পর্যন্ত সিএনজি স্টেশন বন্ধ থাকবে। |
দ্রুত এগিয়ে চলা এশিয়ার মধ্য আয়ের দেশগুলো গরিব মানুষকে যথাযথ সামাজিক সুরক্ষা দিতে ব্যর্থ হচ্ছে। আর বাংলাদেশসহ নিম্ন আয়ের দেশগুলোর পরিস্থিতি আরও করুণ।এশীয় উন্নয়ন ব্যাংকের (এডিবি) সদ্য প্রকাশিত এক সমীক্ষা প্রতিবেদনে এই পর্যবেক্ষণ তুলে ধরা হয়েছে। ‘দ্য সোশ্যাল প্রোটেকশন ইনডেক্স’ বা সামাজিক সুরক্ষা সূচক নামের এই প্রতিবেদনে এশিয়ার ৩৫টি দেশের সামাজিক সুরক্ষা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করা হয়েছে। সামাজিক বিমা, সামাজিক সহযোগিতা ও শ্রমবাজার কর্মসূচি—এই তিনটি প্রধান বিষয়ের আলোকে সামাজিক সুরক্ষা সূচক নির্ণয় করা হয়েছে। সামাজিক সুরক্ষার জন্য মোট ব্যয়কে সুবিধাভোগীর সংখ্যা দিয়ে ভাগ করা হয়েছে। এডিবির সমীক্ষা অনুসারে, সামাজিক সুরক্ষা সূচকে (এসপিআই) শীর্ষে আছে জাপান। জাপানের সূচক দশমিক ৪১৬। দেশটি মোট দেশজ উৎপাদনের (জিডিপি) ৮ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় করে। তবে এডিবি সামাজিক সুরক্ষায় জিডিপি ব্যয়ের ৫ শতাংশ হারকে সন্তোষজনক হিসেবে অভিহিত করেছে। অন্যভাবে বললে, এসপিআই দশমিক ২০ হতে হবে। এই মানদণ্ডে জাপান ছাড়া আরও তিনটি দেশ আছে। সেগুলো হলো দক্ষিণ কোরিয়া, মঙ্গোলিয়া ও উজবেকিস্তান। এডিবির প্রতিবেদন থেকে দেখা যায়, বাংলাদেশের এসপিআই দশমিক ০৪৩। দেশটি জিডিপির মাত্র ১ দশমিক ৪০ শতাংশ সামাজিক সুরক্ষায় ব্যয় করে বলে এতে দেখা যায়। সার্বিকভাবে বাংলাদেশের অবস্থান ২৮তম। প্রতিবেদনে অবশ্য বলা হয়েছে, শ্রমবাজারবিষয়ক কর্মসূচি বাংলাদেশে বেশ সক্রিয়। মোট সামাজিক সুরক্ষা ব্যয়ের ৩৬ শতাংশই শ্রমবাজার বা কর্মসংস্থানমূলক। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো অতি দরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচি, যার আওতায় প্রায় ৬০ লাখ মানুষের কর্মসংস্থান হয়েছে। এই সংখ্যা সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির মোট সুবিধাভোগীর প্রায় ২৩ শতাংশ। বয়স্ক নারীদের জন্য সামাজিক পেনশন কর্মসূচির ফলে তাঁদের স্বাস্থ্যসেবার সুবিধা বেড়েছে। |
আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে দেশের ১৯ জেলার ৫৩ সংসদীয় আসনের সীমানা পুনর্নির্ধারণ করেছে নির্বাচন কমিশন। আসনগুলো হলো, রংপুর-১ গংগাচড়া উপজেলা। রংপুর-৩ রংপুর সদর উপজেলা (রংপুর সিটি করপোরেশনভুক্ত সংশ্লিষ্ট এলাকাসহ)। কুড়িগ্রাম-২ কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা, রাজারহাট উপজেলা এবং ফুলবাড়ী উপজেলা। কুড়িগ্রাম-৩ সাহেবের আলগা ইউনিয়ন বাদ দিয়ে উলিপুর উপজেলা এবং অষ্টমীরচর ও নয়ার হাট ইউনিয়ন বাদ দিয়ে চিলমারী উপজেলা। কুড়িগ্রাম-৪ রৌমারী উপজেলা, রাজীবপুর উপজেলা এবং চিলমারী উপজেলার অষ্টমীরচর ও নয়ার হাট ইউনিয়ন এবং উলিপুর উপজেলার সাহেবের আলগা ইউনিয়ন।বগুড়া-১ সারিয়াকান্দি উপজেলা ও সোনাতলা উপজেলা। বগুড়া-৫ শেরপুর ও ধুনট উপজেলা।যশোর-৩ বসুন্দিয়া ইউনিয়ন বাদ দিয়ে যশোর সদর উপজেলা। যশোর-৪ বাঘারপাড়া, অভয়নগর ও যশোর সদর উপজেলার বসুন্দিয়া ইউনিয়ন। যশোর-৫ মনিরামপুর উপজেলা। যশোর-৬ কেশবপুর উপজেলা।খুলনা-১ বটিয়াঘাটা ও দাকোপ উপজেলা। খুলনা-৬ কয়রা ও পাইকগাছা উপজেলা। পটুয়াখালী-১ পটুয়াখালী সদর, মির্জাগঞ্জ ও দুমকি উপজেলা। পটুয়াখালী-২ বাউফল উপজেলা। পটুয়াখালী-৩ দশমিনা ও গলাচিপা উপজেলা।পিরোজপুর-১ পিরোজপুর সদর, নাজিরপুর ও নেছারাবাদ উপজেলা। পিরোজপুর-২ কাউখালী, ভান্ডারিয়া ও জিয়ানগর উপজেলা। পিরোজপুর-৩ মঠবাড়িয়া উপজেলা।জামালপুর-২ ইসলামপুর উপজেলা। জামালপুর-৩ মাদারগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলা।ময়মনসিংহ-২ ফুলপুর ও তারাকান্দা উপজেলা। ময়মনসিংহ-৩ গৌরীপুর উপজেলা। ময়মনসিংহ-৪ ময়মনসিংহ সদর উপজেলা।নেত্রকোনা-২ নেত্রকোনা সদর ও বারহাট্টা উপজেলা। নেত্রকোনা-৫ পূর্বধলা উপজেলা।ঢাকা-১৪ ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের ৭ থেকে ১২ নম্বর ওয়ার্ড এবং সাভার উপজেলার কাউন্দিয়া ইউনিয়ন। ঢাকা-১৯ আমিনবাজার, তেঁতুলঝোড়া, ভাকুর্তা ও কাউন্দিয়া ইউনিয়ন বাদ দিয়ে সাভার উপজেলা।গাজীপুর-২ গাজীপুর সিটি করপোরেশনের ১৯ থেকে ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড এবং ৪৩ থেকে ৫৭ নম্বর ওয়ার্ড এবং গাজীপুর ক্যান্টনমেন্ট এলাকা। গাজীপুর-৩ শ্রীপুর উপজেলা ও গাজীপুর সদর উপজেলার মির্জাপুর, ভাওয়ালগড় ও পিরুজালী ইউনিয়ন। নরসিংদী-১ সদর উপজেলার আমদিয়া, পাঁচদোনা ও মেহেরপাড়া ইউনিয়ন বাদ দিয়ে। নরসিংদী-২ পলাশ উপজেলা এবং সদর উপজেলার আমদিয়া, পাঁচদোনা ও মেহেরপাড়া নিয়ে। নরসিংদী-৩ শিবপুর উপজেলা। নরসিংদী-৫ রায়পুরা উপজেলা।নারায়ণগঞ্জ-৩ সোনারগাঁও উপজেলা। নারায়ণগঞ্জ-৪ ফতুল্লা থানা ও সিদ্ধিরগঞ্জ থানা। সুনামগঞ্জ-৪ সুনামগঞ্জ সদর ও বিশ্বম্ভরপুর উপজেলা। সুনামগঞ্জ-৫ ছাতক ও দোয়ারাবাজার উপজেলা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-১ নাসিরনগর উপজেলা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ সরাইল ও আশুগঞ্জ উপজেলা। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর ও বিজয়নগর উপজেলা।কুমিল্লা-৬ কুমিল্লা আদর্শ সদর উপজেলা। কুমিল্লা-৭ চান্দিনা উপজেলা। কুমিল্লা-৮ বরুড়া উপজেলা। কুমিল্লা-১০ কুমিল্লা সদর দক্ষিণ ও নাঙ্গলকোট উপজেলা।চাঁদপুর-১ কচুয়া উপজেলা। চাঁদপুর-২ মতলব (উত্তর) ও মতলব (দক্ষিণ) উপজেলা।চট্টগ্রাম-৫ হাটহাজারী উপজেলা ও চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ১ ও ২ নম্বর ওয়ার্ড। চট্টগ্রাম-৬ রাউজান উপজেলা। চট্টগ্রাম-৮ শ্রীপুর-খরণদ্বীপ ইউনিয়ন বাদ দিয়ে বোয়ালখালী থানা এবং চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের ৩ থেকে ৭ নম্বর ওয়ার্ড। চট্টগ্রাম-১৩ আনোয়ারা উপজেলা ও পটিয়া উপজেলার চর পাথরঘাটা, চরলক্ষ্মা, জুলধা, বড়উঠান ও শিকলবাহা ইউনিয়ন এবং কর্ণফুলী থানা। চট্টগ্রাম-১৪ চন্দনাইশ উপজেলা ও সাতকানিয়া উপজেলার কেওচিয়া, কালিয়াইশ, বাজালিয়া, ধর্মপুর, পুরানগড় ও খাগরিয়া ইউনিয়ন। চট্টগ্রাম-১৫ লোহাগাড়া উপজেলা ও সাতকানিয়া উপজেলার কেওচিয়া, কালিয়াইশ, বাজালিয়া, ধর্মপুর, পুরানগড় ও খাগরিয়া বাদ দিয়ে। |
ঢাকার ধামরাই উপজেলার বরদাইল গ্রামে গতকাল বুধবার সকালে সেনাবাহিনীর একটি প্রশিক্ষণ হেলিকপ্টার জরুরি অবতরণকালে দুর্ঘটনার কবলে পড়েছে। এ সময় হেলিকপ্টারের আরোহী দুই সেনা কর্মকর্তা আহত হন।আহত সেনা কর্মকর্তারা হলেন সিভিল এভিয়েশনের লে. কর্নেল আরিফুল বারী ও মেজর নজরুল ইসলাম।সেনাবাহিনীর নবম পদাতিক ডিভিশনের মেজর সালাহউদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, গতকাল সকাল আটটা ৪২ মিনিটে হেলিকপ্টারটি কুর্মিটোলা বিমানবন্দর থেকে উড্ডয়ন করে। প্রশিক্ষণ চলাকালে যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেওয়ায় সাড়ে নয়টার দিকে তা ধামরাইয়ের কুল্লা ইউনিয়নের বরদাইল গ্রামে বংশী নদীর তীরে অবতরণের চেষ্টা করা হয়। এ সময় হেলিকপ্টারটি স্থলভূমিতে পড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে দুই সেনা কর্মকর্তা আহত হন।হেলিকপ্টারটি দুর্ঘটনার কবলে পড়ার পর পরই স্থানীয় লোকজন গুরুতর আহত অবস্থায় লে. কর্নেল আরিফুলকে উদ্ধার করে সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান। সেখানে প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে অ্যাম্বুলেন্সে করে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে মেজর নজরুলকে সেনাবাহিনীর একটি উদ্ধারকারী হেলিকপ্টারে করে ঢাকায় নেওয়া হয়।দুর্ঘটনার খবর পেয়ে সাভার সেনানিবাসের নবম পদাতিক ডিভিশন এবং সিভিল এভিয়েশনের কর্মকর্তা ও সেনাসদস্যসহ স্থানীয় উপজেলা ও পুলিশ প্রশাসনের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। বিকেল সাড়ে পাঁচটার দিকে ঢাকা থেকে সেনাবাহিনীর একটি ক্রেন এনে হেলিকপ্টারটি ঢাকা নেওয়া হয়। দুর্ঘটনার কবলে পড়ে হেলিকপ্টারটির সিঁড়ি ও পাখা ভেঙে যায়। বিচ্ছিন্ন হওয়া পেছনের অংশ মূল অংশ থেকে ৫০ গজ দূরে পড়ে ছিল। আর চালকের আসনসহ ইঞ্জিনের অংশ অনেকটা অক্ষত থাকলেও কাত হয়ে পড়েছিল। চৌটাইল গ্রামের প্রত্যক্ষদর্শী আদিল হালদারের স্ত্রী রোকেয়া বেগম জানান, দুর্ঘটনার আগে হেলিকপ্টারটি তাঁদের গ্রামের ওপরে চক্কর দিতে থাকে। এ সময় গ্রামের লোকজন আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই বিকট শব্দ করে এটি নিচে পড়ে যায়। |
বগুড়া শহরের খান্দার এলাকায় গত মঙ্গলবার রাতে দুর্বৃত্তদের ধারালো অস্ত্রের আঘাতে সরকারি ওষুধ কোম্পানির একজন কর্মকর্তা খুন হয়েছেন। ওই কর্মকর্তার নাম ইমরান হোসেন (২৫)।জানা গেছে, ইমরান এসেনশিয়াল ড্রাগস কোম্পানি লিমিটেডের বগুড়া কারখানার প্রডাকশন কর্মকর্তা। তাঁর বাড়ি খুলনার জিগাতলা এলাকায়। লাশ ময়নাতদন্তের জন্য বগুড়া শহীদ জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে। পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। বগুড়া সদর থানার পুলিশ জানায়, মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে রিকশায় করে বাসায় ফেরার পথে শহরের খান্দার এলাকায় সানমুন স্কুলের কাছে একদল দুর্বৃত্ত ইমরানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে গুরুতর আহত করে। স্থানীয় লোকজন তাঁকে জিয়াউর রহমান মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।সদর থানার পরিদর্শক (তদন্ত) নূরে আলম সিদ্দিকী জানান, ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে ইমরান মারা গেছে বলে প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। |
বিএনপির নেতা ও সাবেক মন্ত্রী আবদুল আলীমের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল বুধবার রাষ্ট্রপক্ষের ৩২তম সাক্ষী হিসেবে সাক্ষ্য দিয়েছেন রফিকুল ইসলাম। তিনি এ মামলায় জব্দ তালিকার সাক্ষী।বিচারপতি ওবায়দুল হাসানের নেতৃত্বে তিন সদস্যের আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২-এ রফিকুলের জবানবন্দি নেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি রানা দাশগুপ্ত। শারীরিক কারণে জামিনে থাকা আলীম এ সময় ট্রাইব্যুনালে হাজির ছিলেন। জবানবন্দিতে রফিকুল বলেন, তিনি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। ২০১১ সালের এপ্রিল মাসে তিনি বগুড়া থেকে প্রকাশিত দৈনিক বাংলাদেশ পত্রিকায় বিজ্ঞাপন ব্যবস্থাপক হিসেবে কাজ করতেন। সে সময় এ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওই পত্রিকার ১৯৭২ সালের ১৭ ও ২৩ জানুয়ারি প্রকাশিত সংখ্যা জব্দ করেন। ওই দুটি সংখ্যায় প্রকাশিত তিনটি প্রতিবেদন তিনি জবানবন্দিকালে ট্রাইব্যুনালে উপস্থাপন করেন।জবানবন্দি শেষে রফিকুল ইসলামকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসানুল হক। জেরা শেষে পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য আজ বৃহস্পতিবার দিন ধার্য করা হয়। |
পদায়নের পরও কর্মস্থল থেকে চিকিৎসকদের চলে আসাকে স্বাস্থ্যব্যবস্থার বড় সমস্যা হিসেবে মনে করেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী আ ফ ম রুহুল হক। তিনি বলেন, ‘বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকেরা রেলগাড়িতে চড়ে কর্মস্থলে যায়, আবার নৌকায় করে ফিরে আসে। অনেককে পরে আর খুঁজেও পাওয়া যায় না।’ এর সমাধানে চিকিৎসকদের নিয়োগব্যবস্থাকে বিকেন্দ্রীকরণের ওপরও জোর দেন স্বাস্থ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘নওগাঁর চিকিৎসক যাতে নওগাঁয় থাকতে পারেন, সেই ব্যবস্থা করতে হবে। কেউ চাইলে অন্য এলাকায়ও যাতে যেতে পারেন, সেই ব্যবস্থাও রাখতে হবে।’ গতকাল বুধবার ‘স্বাস্থ্যসেবায় সুশাসনের চ্যালেঞ্জ ও উত্তরণের উপায়’ শীর্ষক জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের অভিজ্ঞতাভিত্তিক দিনব্যাপী এক পরামর্শ সভার সমাপনী পর্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) আয়োজনে নগরের বিয়াম মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত এই সভার আগে দিনব্যাপী এক কর্মশালায় স্বাস্থ্য খাতের বিভিন্ন সমস্যা ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পরে মন্ত্রীর সামনে সেসব উপস্থাপন করা হয়। সভায় উত্থাপিত প্রায় সব কটি সমস্যার সঙ্গেই স্বাস্থ্যমন্ত্রী একমত পোষণ করেন। তিনি এ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্য খাতে নজরদারি এবং চিকিৎসক ও সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের আন্তরিকতার অভাবকে বেশি দায়ী করেন। স্বাস্থ্যমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, ‘কমিউনিটি স্বাস্থ্য ক্লিনিকে চিকিৎসকের পদ নেই বলেই সেগুলো ভালো চলছে।’ তিনি বলেন, স্বাস্থ্যব্যবস্থায় জনবলের স্বল্পতা আছে। প্রায় সাত হাজার পদ শূন্য। ক্ষমতা থেকে যাওয়ার আগে যেভাবেই হোক এই পদ পূরণ করে যাওয়ার আশ্বাস দেন তিনি।সভায় টিআইবির ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য অধ্যাপক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম সভাপতিত্ব করেন। সভায় জানানো হয়, দেশের ৪৫টি অঞ্চলে টিআইবির উদ্যোগে গঠিত সচেতন নাগরিক কমিটি (সনাক) ও ইয়ুথ এনগেজমেন্ট অ্যান্ড সাপোর্টের (ইয়েস) সদস্যরা সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের সহযোগিতায় স্বাস্থ্যপ্রতিষ্ঠানে সুশাসন প্রতিষ্ঠায় কাজ করে যাচ্ছেন। সমাপনী অধিবেশনের বিশেষ অতিথি ছিলেন স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক অধ্যাপক খন্দকার মো. সিফায়েত উল্লাহ। টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান স্বাগত বক্তব্য দেন। সভায় দিনব্যাপী দলীয় আলোচনার সারসংক্ষেপ উপস্থাপন করেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সাইদুর রহমান ও ফরিদপুর জেলার সিভিল সার্জন সিরাজুল হক তালুকদার। |
রানা প্লাজা ধসে এক হাজার ১৩১ জন মানুষ মারা গেছে। বেঁচে যাওয়া মানুষগুলোর জীবনও একপ্রকার ধ্বংস হয়ে গেছে। বেঁচে যাওয়া এমনই একজন পোশাকশ্রমিক সালমা। দুর্ঘটনায় তাঁর মেরুদণ্ডের হাড় ভেঙে যায়। চিকিৎসা শেষে এখন জীবিকা নিয়ে দুশ্চিন্তায় সালমা। ১৩ জুন সালমার অস্ত্রোপচার হয় রাজধানীর জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতালে। প্রথম আলো ট্রাস্টের আর্থিক সহায়তায় তাঁর চিকিৎসা চলছে। গতকাল বুধবার হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলেছে, সালমা এখন বাড়ি যাওয়ার উপযুক্ত। কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের সালমা কাজ করতেন রানা প্লাজার পঞ্চম তলায় ফ্যানটম গার্মেন্টসে। থাকেন সাভারের ব্যাংক কলোনি এলাকায়।সালমার বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে চাইলে হাসপাতালের পরিচালক মাহবুবুল আলম বলেন, সালমা আগের চেয়ে অনেকখানি সুস্থ ও হাঁটাচলা করতে পারছেন। তবে সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত ভারী কাজ করা নিষেধ। তিনি বলেন, ‘এর পরও সমস্যা বা জটিলতা দেখা দিলে আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারবেন।’হাসপাতাল ছাড়ার পর কীভাবে চলবে, এ নিয়ে সালমা বেশ দুশ্চিন্তাগ্রস্ত। তিনি বলেন, ‘আমি কবে থেকে কাজ করতে পারব জানি না।’বেতন-ভাতা পেয়েছেন কি না, জানতে চাইলে তিনি জানান, এক মাসের বেতন ও ১০০ ঘণ্টার ওভারটাইম ভাতা মিলিয়ে মোট ১৬ হাজার টাকা পেয়েছেন। এখনো ৮৪ ঘণ্টার ওভারটাইমের ভাতা পাওনা আছে। সরকার বা বিজিএমইএ কোনো ধরনের সাহায্য করেনি।গত ২৪ এপ্রিল রানা প্লাজা ধসের সাড়ে তিন ঘণ্টা পর উদ্ধার হন সালমা। তাঁকে প্রথমে নেওয়া হয় সাভারের এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে। দুদিন পর কিছু ওষুধ দিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়। সালমার বোন ফাতেমা জানান, সালমার অবস্থা খারাপ হতে থাকলে গত ৮ মে সাভার প্রাইম হাসপাতালে চিকিৎসা দেওয়া হয়। গত ১০ জুন জাপান বাংলাদেশ ফ্রেন্ডশিপ হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তাকে নিয়ে আসে। |
রাজধানীর শাহবাগে গতকাল বুধবার হরতালবিরোধী মিছিল করেছে গণজাগরণ মঞ্চ। এ সময় যেকোনো পরিস্থিতিতে যুদ্ধাপরাধীদের বিচার ও জামায়াত-শিবিরের রাজনীতি নিষিদ্ধের দাবিতে আন্দোলন আরও বেগবান করার প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে মঞ্চ। বেলা সাড়ে ১১টায় শাহবাগ থেকে হরতালবিরোধী মিছিল শুরু হয়। সেখান থেকে টিএসসি হয়ে মিছিলটি আবার শাহবাগে আসে। এরপর এটি কাঁটাবন হয়ে শাহবাগে আসে।হরতালবিরোধী মিছিল শেষে শাহবাগে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ করে গণজাগরণ মঞ্চ। এ সময় গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক ইমরান এইচ সরকার বলেন, ছাত্রশিবিরের ডাকা হরতাল প্রত্যাখ্যান করেছে দেশের মানুষ। দোকানপাট, অফিস-আদালত ও স্কুল-কলেজ খোলা ছিল। রাজপথে গাড়ি চলাচল করেছে। শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ গতকাল পরীক্ষা কার্যক্রম অব্যাহত রাখায় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের ধন্যবাদ জানান গণজাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক। |
লালমনিরহাটের কলেজছাত্রী পারভীনা গণধর্ষণ ও হত্যা মামলার রায় ঘোষণার দিন দ্বিতীয়বারের মতো পিছিয়েছে। ৯ জুলাই লালমনিরহাটের জেলা ও দায়রা জজ ওসমান হায়দারের আদালত রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেছেন।গত ১৯ জুন চাঞ্চল্যকর এ মামলার বাদী ও বিবাদী পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হলে ২৭ জুন রায় ঘোষণার প্রথম তারিখ ধার্য করা হয়। কিন্তু ওই দিন মামলার রায় প্রস্তুত না হওয়ায় আদালত পুনরায় রায় ঘোষণার দিন ৩ জুলাই (গতকাল বুধবার) ধার্য করেন। একই কারণে গতকাল রায় ঘোষণা না করে আদালত দ্বিতীয়বারের মতো তারিখ পিছিয়ে ৯ জুলাই রায় ঘোষণার দিন ধার্য করেন।মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০০৮ সালের ১০ জানুয়ারি পারভীনা নিখোঁজ হন। ১২ জানুয়ারি পুলিশ তাঁর লাশ উদ্ধার করে এবং এ ঘটনায় জড়িত থাকার অভিযোগে হালিম বাদশাকে গ্রেপ্তার করে। পারভীনার বড় ভাই সদর থানায় মামলা করেন। আদালতে হালিম বাদশা ১৬৪ ধারায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। এর ভিত্তিতে হালিম বাদশা, আতাউর রহমান, রাশেদুল ইসলাম ও মাহবুবুর রহমানকে মামলার আসামি করা হয়। |
ছাত্রলীগ নেতা হত্যা মামলার আসামিরা আদালত থেকে জামিন পাওয়ায় টাঙ্গাইলে সরকারি কৌঁসুলীর (পিপি) কক্ষে গতকাল বুধবার তালা ঝুলিয়ে দেন আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আইনজীবীরা।আওয়ামী আইনজীবী পরিষদের সাধারণ সম্পাদক আবদুল আজিজ জানান, গত সোমবার গোপালপুর উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক ইমরান হত্যা মামলার নয়জন আসামি টাঙ্গাইল জেলা ও দায়রা জজ আদালত থেকে জামিন লাভ করেন। আওয়ামী লীগ-সমর্থিত আইনজীবীদের অভিযোগ, পিপি আসামিদের জামিন শুনানিতে বিরোধিতা করেননি। তাই বিক্ষুব্ধ আইনজীবীরা গতকাল দুপুরে পিপির কার্যালয়ে তালা ঝুলিয়ে দেন। পরে পিপি আকবর আলি খান অতিরিক্ত পিপির কাছে দায়িত্ব দিয়ে ছুটিতে যাবেন, এই শর্তে তাঁর কক্ষের তালা খুলে দেওয়া হয়।আকবর আলি খান জানান, তিনি ছাত্রলীগ নেতা হত্যাকারীদের জামিনে বিরোধিতা করেছেন। কিন্তু মামলায় সুনির্দিষ্ট অভিযোগ না থাকায় আদালত নয়জনকে জামিন দিয়েছেন। |
বেড়িবাঁধ নির্মাণের দাবিতে গতকাল বুধবার দুপুরে নোয়াখালীর হাতিয়া উপজেলার সুখচর ইউনিয়নের প্রায় ২০০ মানুষ উপজেলা পরিষদের সামনে মানববন্ধন করেছে।মানববন্ধন শেষে উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার চত্বরে সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সমাবেশে বক্তব্য দেন জোয়ারের পানিতে ক্ষতিগ্রস্ত সুখচর ইউনিয়নের বাসিন্দা কৃষক জাবের উদ্দিন, কিরণ দাস, গিয়াস উদ্দিন এবং ক্ষেতমজুর ইউনিয়ন নোয়াখালী জেলা কমিটির সভাপতি আনোয়ার হোসেন। শেষে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার (ইউএনও) কাছে একটি স্মারকলিপি দেওয়া হয়।পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) স্থানীয় উপবিভাগীয় প্রকৌশলী (এসডিই) নাসির উদ্দিন বলেন, সুখচর ইউনিয়নে বেড়িবাঁধ নির্মাণের জন্য গত এপ্রিল মাসে প্রায় ৩৭ লাখ টাকার দরপত্র আহ্বান করা হয়। বাবর অ্যান্ড ব্রাদার্স ও এইচবি নামক দুটি প্রতিষ্ঠানকে কার্যাদেশও দেওয়া হয়। কিন্তু স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের অসহযোগিতা এবং প্রয়োজনীয় মাটি না পাওয়ায় বেড়িবাঁধ নির্মাণ করা যায়নি। |
‘রেশমা উদ্ধার নিয়ে বিভ্রান্তিকর সংবাদ সম্পর্কে’ বক্তব্য জানাতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তর (আইএসপিআর) গতকাল বুধবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবে পৃথক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করে।তবে এখানে আইএসপিআর বা সেনাবাহিনীর কেউ বক্তব্য রাখেননি। এনাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের পরিচালক (জনসংযোগ) জাহিদুর রহমান সংবাদ সম্মেলনে সূচনা বক্তব্য দেন। এরপর একে একে সাতজন নিজেদের পরিচয় দেন। তাঁরা হলেন—রেশমা যে বাড়িতে ভাড়া থাকতেন, তার মালিক মনসুর আহমেদ নুরু ও তাঁর স্ত্রী হাজেরা বেগম, রেশমার সহকর্মী এনামুল হক মিলন ও তাঁর স্ত্রী লিপি বেগম, এনামুলের গ্রামের বাড়ি গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের ধোপাডাঙা ইউনিয়নের চেয়ারম্যান এ টি এম মাহাবুব আলম শাহীন, ওই ইউনিয়নের উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক হাবিবুর রহমান আকন্দ এবং এনাম মেডিকেলের আরেকজন পরিচালক রওশন আক্তার চৌধুরী। শুরুতেই জাহিদুর রহমান বলেন, ‘আইএসপিআর থেকে আমাদের অনুরোধ করা হয়েছে রেশমার বিষয়ে অবস্থান পরিষ্কার করার জন্য।’জাহিদুর রহমান বলেন, সানডে মিরর পত্রিকায় এনাম হাসপাতালে রেশমা দুই দিন ভর্তি ছিলেন বলে প্রতিবেদন প্রকাশিত হওয়ার পর তাঁরা তন্নতন্ন করে ভর্তি রোগীদের নামের তালিকা খুঁজেছেন। কিন্তু সেখানে রেশমা বা জয়া (গ্রামে রেশমাকে জয়া নামে ডাকা হতো) নাম পাননি। তিনি বলেন, ‘কেউ যদি বলতে চান প্রাথমিক চিকিৎসা নেওয়া এক হাজার আহতের মধ্যে রেশমা থাকতে পারেন, তাহলে সে বিষয়ে আমাদের কিছু জানা নেই।’এরপর মনসুর আহমেদ বলেন, রানা প্লাজা ধসের দুই দিন পরে রেশমার সঙ্গে তাঁদের দেখা হয়েছে—এমন তথ্য সম্পূর্ণ মিথ্যা। হাজেরা-মনসুর দম্পতির দাবি, এই বিষয় নিয়ে কোনো সাংবাদিক তাঁদের সঙ্গে কথা বলেননি।এনামুল বলেন, তাঁর সঙ্গে কোনো বিদেশি সাংবাদিকের কথা হয়নি। মাহাবুব আলম বলেন, দেশের ভাবমূর্তি নষ্ট করার প্রতিবাদ জানাতেই তিনি এই সংবাদ সম্মেলনে এসেছেন। কেউ তাঁকে নিয়ে আসেনি। তবে এনামুল ও তাঁর স্ত্রী লিপি বলেছেন, চেয়ারম্যান তাঁদের এখানে নিয়ে এসেছেন। লিপি বেগম বলেন, বিদেশি সাংবাদিকেরা এসেছেন শুনে তাঁরা ভয় পেয়ে বাড়ি থেকে অন্যত্র চলে যান। তিনি বলেন, ‘আমরা গ্রামের মানুষ, এই জন্যে ভয় পাইছি।’ তথ্যমন্ত্রীর ব্রিফিং: গতকাল বুধবার তথ্য মন্ত্রণালয়ে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেন, মিরর-এর প্রতিবেদন মিথ্যা। পত্রিকাটির যে সাংবাদিক ওই প্রতিবেদন তৈরি করেছেন, তিনি একজন কুখ্যাত সাংবাদিক। এ ধরনের ‘মিথ্যা প্রতিবেদন’ যাচাই না করে এ দেশের গণমাধ্যমে ছাপানোর মাধ্যমে তথ্যসন্ত্রাসকে প্রশ্রয় দেওয়া হচ্ছে। |
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে কোনো মেয়র পদপ্রার্থীকে জাতীয় পার্টির (জাপা) চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ সমর্থন দেননি বলে তাঁর দলের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।গতকাল বুধবার এরশাদের গণমাধ্যম ও রাজনৈতিক সচিব সুনীল শুভরায়ের সই করা জাপার বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়। তাতে বলা হয়, একজন মেয়র পদপ্রার্থীকে জাপার সমর্থন দেওয়ার কথা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার করা হয়েছে, তা সত্য নয়। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, যেহেতু এ নির্বাচনে জাতীয় পার্টির সমর্থিত কোনো মেয়র পদপ্রার্থী নেই, সে কারণে দলীয় নেতা-কর্মী ও সমর্থকেরা তাঁদের পছন্দমতো যোগ্য প্রার্থীকে ভোট দেবেন। কেন্দ্রের নির্দেশ ছাড়া কেউ দলের নামে কোনো প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন প্রদানের ঘোষণা দেওয়ার অধিকার রাখেন না। প্রসঙ্গত, এর আগে গাজীপুর সিটি নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বী দুই মেয়র প্রার্থী আজমত উল্লা খান এবং এম এ মান্নান এরশাদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে দোয়া চেয়েছেন। তিনি তাঁদের শুভকামনা করেছেন। |
রাজধানীর ডেমরার বাঁশেরপুল এলাকায় খালাতো ভাইয়ের বাসায় রাকিব হোসেন (২৫) নামের এক পোশাকশ্রমিক খুন হয়েছেন। এ ঘটনায় কাঁচির আঘাতে গুরুতর আহত হয়েছেন রাকিবের খালাতো ভাই সাইফুল ইসলাম।পুলিশ এ ঘটনায় সাইফুলের বন্ধু তালাত মাহমুদকে গ্রেপ্তার করেছে। তাঁর তথ্যের ভিত্তিতে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন সাইফুলকেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তালাত রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্সের কনস্টেবল। নিহত রাকিবের স্বজনেরা অভিযোগ করেন, সাইফুল পোশাক কারখানায় ঝুটের ব্যবসা করেন। ব্যবসা-সংক্রান্ত বিরোধের জেরে প্রতিপক্ষ সাইফুলের বাসায় ঢুকে এই হতাহতের ঘটনা ঘটিয়েছে।পুলিশের ওয়ারী বিভাগের উপকমিশনার মো. ইলিয়াছ শরীফ বলেন, রাকিব হত্যায় সাইফুল ও কনস্টেবল তালাত জড়িত থাকতে পারে বলে সন্দেহ করা হচ্ছে। তালাত নিজেকে সাইফুলের বন্ধু দাবি করে বলেছেন, সাইফুলই রাকিবের গলায় তার পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করেছেন। |
রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ প্রেসিডেন্ট গার্ড রেজিমেন্টকে (পিজিআর) নেতৃত্বের বিন্যাসের প্রতি আস্থাশীল থেকে সুষ্ঠুভাবে দায়িত্ব পালন এবং রেজিমেন্টের মান বৃদ্ধির আহ্বান জানিয়েছেন। খবর বাসসের।গতকাল বুধবার ঢাকা সেনানিবাসের শহীদ ক্যাপ্টেন হাফিজ হলে পিজিআরের ৩৮তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে পিজিআরের দরবারে বক্তৃতাকালে রাষ্ট্রপতি বলেন, ‘দেশ ও জাতি আপনাদের ওপর যে মহান দায়িত্ব অর্পণ করেছে, সেই দায়িত্ব পালনে যেকোনো আত্মত্যাগ জাতির ইতিহাসে আপনাদের চিরস্মরণীয় করে রাখবে।’ |
প্রথম আলো ট্রাস্ট মাদকবিরোধী আন্দোলন ও বন্ধুসভার উদ্যোগে ব্রাহ্মণবাড়িয়ায় গতকাল বুধবার ‘মাদকমুক্ত সুস্থ জীবন’ শিরোনামে একটি আলোচনা সভা ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন কাজী মো. মোস্তফা জালাল, সাবেক পৌর চেয়ারম্যান আল মামুন সরকার, বন্ধুসভার উপদেষ্টা সোপানুল ইসলাম। পরে স্থানীয় প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যরা একটি মাদকবিরোধী নাটিকা মঞ্চস্থ করেন। |
আকতারুজ্জামানপিরোজপুরের ভান্ডারিয়া উপজেলার হেতালিয়া গ্রামের আকতারুজ্জামানের হার্টে তিনটি ব্লক ধরা পড়েছে। তাঁর চিকিৎসার জন্য প্রায় চার লাখ টাকা দরকার। তিনি একজন সামান্য বেতনের পোস্ট মাস্টার। গ্রামে তিন কাঠার বসতবাড়ি ছাড়া তাঁর আর কোনো আশ্রয় নেই। এত টাকা জোগাড় করার ক্ষমতা তাঁর নেই। তাই তিনি দেশের বিত্তবানদের কাছে আর্থিক সহযোগিতার আহ্বান জানিয়েছেন। আকতারুজ্জামানকে সহযোগিতা পাঠানোর ঠিকানা: আকতারুজ্জামান, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ১৮০৭৭৪, রূপালী ব্যাংক, সদর রোড, করপোরেট শাখা, বরিশাল। অথবা, সঞ্চয়ী হিসাব নম্বর ৪৫৯৮২, ইসলামী ব্যাংক, বরিশাল শাখা। বিজ্ঞপ্তি। |
টগার হাওরে অবৈধ মশারি ও কারেন্ট জাল দিয়ে মাছ ধরার দায়ে গতকাল বুধবার সুনামগঞ্জের ধরমপাশা উপজেলার ছয় জেলেকে সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। ওই জেলেদের কাছ থেকে পাঁচটি মশারি জাল ও ১২টি কারেন্ট জাল জব্দ করে পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। উপজেলা মৎস্য কার্যালয়ের উদ্যোগে এ ভ্রাম্যমাণ আদালতের নেতৃত্ব দেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও নির্বাহী হাকিম মোহাম্মদ খালেদুর রহমান। |
২০১৩ সালে এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পাওয়া ২৬ শিক্ষার্থীকে সংবর্ধনা দিয়েছে বেসরকারি সংস্থা সার্ভ দ্য পিপল পরিচালিত হাবীব-শাহজাদী ফাউন্ডেশন। বরিশালের বানারীপাড়া উপজেলার চাখার ফজলুল হক ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে সম্প্রতি অনুষ্ঠিত এ সংবর্ধনায় বানারীপাড়ার তিনটি বিদ্যালয়ের এসব শিক্ষার্থীর হাতে ক্রেস্ট ও নগদ অর্থ তুলে দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন বানারীপাড়ার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা সৈয়দ মোর্শেদ আলী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সার্ভ দ্য পিপল ও হাবীব-শাহজাদী ফাউন্ডেশনের চেয়ারপারসন বেগম শাহজাদী। বিজ্ঞপ্তি। |
প্রথম আলোর উদ্যোগে গত সোমবার রাজধানীর সংবাদপত্র হকার্স কল্যাণ বহুমুখী সমবায় সমিতির প্রিয়াঙ্গন ও মল্লিকা সেন্টারে ১৩৮ জন সংবাদপত্র বিক্রয়কর্মীকে রেইনকোট দেওয়া হয়েছে। রেইনকোট বিতরণ অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন প্রথম আলো ঢাকা কার্যালয়ের সহকারী ব্যবস্থাপক খান ইমাম হোসেন ও সার্কুলেশন নির্বাহী গৌতম মণ্ডল। নিজস্ব প্রতিবেদক। |
৪ জুলাই, ২০১৩আজকের এই তারিখে জন্মগ্রহণ করায় পাশ্চাত্যমতে আপনি কর্কট রাশির জাতক বা জাতিকা। আপনার জন্য গুরুত্বপূর্ণ সংখ্যা ২ ও ৪। গুরুত্বপূর্ণ দিন রবি ও সোমবার। শুভ রং—সাদা, হালকা সবুজ ও মেরুন। শুভ রত্ন—শ্বেত পোখরাজ, মুন স্টোন। বিশিষ্ট ব্যক্তিত্ব—ফুটবলার বাদল রায়, খান জয়নুল ও জিনা লোলো ব্রিজিডা। এবার চলুন জেনে নেওয়া যাক আপনার রাশিতে আজকের পূর্বাভাস:মেষ (২১ মার্চ-২০ এপ্রিল): কর্মস্থলে প্রতিপক্ষের অসাধু তৎপরতা ব্যর্থ হবে। বিদেশ যাত্রার ক্ষেত্রে নতুন সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে। পাওনা আদায় হবে। যেকোনো চুক্তি সম্পাদনের জন্য দিনটি শুভ। প্রেমে সাফল্যের সম্ভাবনা আছে।বৃষ (২১ এপ্রিল-২১ মে): বৃষের বন্ধুদের কেউ কেউ কর্মস্থলে একাধিক সূবর্ণ সুযোগ পেতে পারেন। পাওনা আদায়ে প্রভাবশালী কারও সহযোগিতা পেতে পারেন। দূরের যাত্রা শুভ। প্রেমের ক্ষেত্রে ভুল বোঝাবুঝির অবসান হবে।মিথুন (২২ মে-২১ জুন): বেকারদের কারও কারও বিদেশ যাত্রার প্রক্রিয়া চূড়ান্ত হতে পারে। সন্তানসন্ততির কৃতিত্বে আপনার সামাজিক মর্যাদা বৃদ্ধি পেতে পারে। আপনাকে অবাক করে দিয়ে সহকর্মীর কেউ আজ প্রেম নিবেদন করতে পারে।কর্কট (২২ জুন-২২ জুলাই): কোনো ঘনিষ্ঠ বন্ধু আপনার ব্যবসায় বিনিয়োগের আগ্রহ প্রকাশ করতে পারে। পাওনা আদায়ে তৎপর হোন। কোনো আইনি সমস্যার সমাধান হতে পারে। প্রবাসী কারও কাছ থেকে প্রেমের প্রস্তাব পেতে পারেন।সিংহ (২৩ জুলাই-২৩ আগস্ট): কর্মস্থলে বসের মন জুগিয়ে চলতে পারলে শেষমেশ আপনিই লাভবান হবেন। ফেসবুকে কারও হেঁয়ালিপূর্ণ মন্তব্যের আড়ালে লুকিয়ে থাকতে পারে প্রেমের পরোক্ষ আহ্বান। রাজনৈতিক তৎপরতা শুভ।কন্যা (২৪ আগস্ট-২৩ সেপ্টেম্বর): ব্যবসায় নতুন বিনিয়োগ আশার সঞ্চার করবে। পরিবারের কারও অসুস্থতা আপনার সার্বিক কর্মকাণ্ডে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে। উচিত হচ্ছে না জেনেও কেউ কেউ পরকীয়ায় জড়িয়ে পড়তে পারেন।তুলা (২৪ সেপ্টেম্বর-২৩ অক্টোবর): কর্মস্থলে নতুন সহকর্মী ঝামেলা পাকাতে পারে। প্রেমবিষয়ক জটিলতার অবসান হতে পারে। আজ আকস্মিকভাবে অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা আছে। নতুন ব্যবসায় হাত দেওয়ার জন্য দিনটি বিশেষ শুভ।বৃশ্চিক (২৪ অক্টোবর-২২ নভেম্বর): দিনটি শুরু হতে পারে প্রিয়জনের কোনো সুসংবাদ দিয়ে। আজ কারও কাছ থেকে আর্থিক সহায়তা পেতে পারেন। সামাজিক কর্মকাণ্ডে ব্যস্ততা বৃদ্ধি পেতে পারে। প্রেমের ক্ষেত্রে ইতিবাচক সাড়া পাবেন।ধনু (২৩ নভেম্বর-২১ ডিসেম্বর): শিক্ষা ও গবেষণায় অবদানের জন্য বিদেশ থেকে সম্মাননা পেতে পারেন। ভালো লাগার মানুষটিকে প্রেমের প্রস্তাব দিতে পারেন। কারণ, এ ব্যাপারে ভাগ্য আজ আপনার সহায় থাকবে। দূরের যাত্রা শুভ।মকর (২২ ডিসেম্বর-২০ জানুয়ারি): ব্যবসায়িক প্রয়োজনে আজ প্রতিপক্ষকে কিছুটা ছাড় দিতে হতে পারে। প্রেমে ব্যর্থ হয়ে থাকলে আজ আবার উদ্যোগ নিন—ভাগ্য এ ক্ষেত্রে সুপ্রসন্ন থাকতে পারে। আজ আপনার অর্থভাগ্য বিশেষ শুভ।কুম্ভ (২১ জানুয়ারি-১৮ ফেব্রুয়ারি): কর্মস্থলে তথ্যবিভ্রাটের কারণে সাময়িক জটিলতা দেখা দিতে পারে। বেকারদের কারও কারও কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা আছে। প্রেমের ক্ষেত্রে আজ কেউ আপনার মনের দরজায় কড়া নাড়তে পারে। দূরের যাত্রা শুভ।মীন (১৯ ফেব্রুয়ারি-২০ মার্চ): ব্যবসায় ঝুঁকি গ্রহণ করে লাভবান হতে পারেন। প্রবাসী কারও সঙ্গে রোমান্টিক সম্পর্কের সূচনা হতে পারে। আজ আকস্মিকভাবে অর্থপ্রাপ্তির সম্ভাবনা আছে। সৃজনশীল কাজের জন্য সম্মাননা পেতে পারেন। |
‘সেনাবাহিনীকে নিয়ে ফাউল খেলবেন না। অনেক সময় ফাউল খেললে আঘাত নিজের গায়ে এসে লাগার সম্ভাবনা আছে।’সব মহলের প্রতি এ অনুরোধ জানিয়েছেন নবম পদাতিক ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী। তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশ সেনাবাহিনীকে নিয়ে ষড়যন্ত্র হচ্ছে। ভাবমূর্তি নষ্ট করার চেষ্টা করা হচ্ছে। সেনাবাহিনীর ভাবমূর্তি কচুর পাতার পানির মতো টলটল করে ভাসে না যে, কারও পায়ের ধাক্কায় সেখান থেকে খসে পড়ে যাবে।’সাভারে ধসে পড়া রানা প্লাজার শ্রমিক রেশমা উদ্ধার নিয়ে পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত খবরের পরিপ্রেক্ষিতে আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) ডাকা সংবাদ সম্মেলনে হাসান সারওয়ার্দী এ কথা বলেন। গতকাল বুধবার বিকেলে সচিবালয়ের তথ্য অধিদপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে এ সংবাদ সম্মেলন হয়।জিওসি বলেন, ‘সানডে মিরর-এর ওই সাংবাদিক এবং তাঁকে সহায়তাকারীদের বিরুদ্ধে মামলা করে ক্ষতিপূরণ আদায়ের জন্য সরকারের কাছে দাবি জানাই। তাঁরা আমাদের সম্মান নষ্ট করেছেন। এর সঙ্গে যাঁরা জড়িত আছেন, তাঁদের সবার শাস্তি হওয়া উচিত। তদন্ত করে এঁদের বের করতে হবে।’সংবাদ সম্মেলনে মেজর জেনারেল চৌধুরী হাসান সারওয়ার্দী ছাড়াও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা ও ত্রাণ মন্ত্রণালয়ের সচিব মেজবাহ উল আলম, প্রধান তথ্য কর্মকর্তা আমিনুল ইসলাম, ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আলী আহম্মেদ খান, সেনাবাহিনীর ইঞ্জিনিয়ার ব্রিগেডের অধিনায়ক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আজমল, ঢাকা রেঞ্জের ডিআইজি মাহফুজুল হক নুরুজ্জামান ও আইএসপিআরের পরিচালক শাহিনুল ইসলাম উপস্থিত ছিলেন।গত ২৪ এপ্রিল সাভারের নয়তলা রানা প্লাজা ধসে পড়ে। এ ঘটনায় এক হাজার ১৩১ জন নিহত হন। ভবনধসের ১৭ দিনের মাথায় ১০ মে ধ্বংসস্তূপ থেকে রেশমাকে জীবিত উদ্ধার করা হয়, যা সারা বিশ্বে আলোড়ন সৃষ্টি করে। এরপর গত ২৩ জুন একটি অনলাইন সংস্করণে ‘রানা প্লাজা ট্রাজেডি: রেশমা উদ্ধার নিয়ে চাঞ্চল্যকর তথ্য’ শিরোনামে একটি প্রতিবেদন প্রকাশ করা হয়। এরপর ১ জুলাই যুক্তরাজ্যের ট্যাবলয়েড সানডে মিরর রেশমা উদ্ধারের ঘটনা ‘সাজানো’ বলে প্রতিবেদন প্রকাশ করে। মিরর এর বরাত দিয়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন পত্রিকা এ খবর প্রকাশ করে। এরপর আইএসপিআর থেকে এর প্রতিবাদ করা হয়।ওই প্রতিবেদনে যাঁদের বক্তব্য ছাপা হয়েছিল, তাঁদের ডেকে এনে গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে আরেকটি সংবাদ সম্মেলন করা হয়। এর এক ঘণ্টা পর একই বিষয়ে তথ্য অধিদপ্তরের মিডিয়া সেন্টারে সংবাদ সম্মেলন ডাকে আইএসপিআর।সাংবাদ সম্মেলনে জিওসি বলেন, রেশমাকে নিয়ে সানডে মিরর এর প্রতিবেদন সম্পূর্ণ মিথ্যা। এটা বাংলাদেশের মর্যাদা, সম্মান, আবেগ, অনুভূতির বিরুদ্ধে পরিকল্পিত ষড়যন্ত্র। তাদের উদ্দেশ্য সেনাবাহিনীকে আঘাত করা, ‘চেইন অব কমান্ড’ নষ্ট করা।সারওয়ার্দী বলেন, ‘যাদের বক্তব্য নিয়ে ওই প্রতিবেদন করা হয়েছে, তাদের অর্থের লোভ দেখানো হয়েছিল। ওই সাংবাদিক ভ্রমণ ভিসায় এ দেশে এসেছিলেন। তিনি তাঁর দেশে ফৌজদারি অপরাধে অভিযুক্ত ছিলেন।’জিওসি বলেন, ‘ভবনধসের পর সেখানে গণমাধ্যম কর্মীদের অবাধ বিচরণ ছিল। তাঁরা যখন যেখানে খুশি যেতে পেরেছেন। অনেক টিভি চ্যানেল সরাসরি উদ্ধার অভিযান দেখিয়েছে। এখানে স্বচ্ছতাই ছিল আমাদের মূল শক্তি।’জিওসি বলেন, ‘সেনাবাহিনীকে বিতর্কিত করার জন্য বিভিন্ন বক্তব্য বিভিন্ন স্থান থেকে উত্থাপিত হচ্ছে। রানা প্লাজায় যখন উদ্ধার অভিযান শুরু করি, তখন থেকেই এ ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে। বিভিন্ন ব্লগেও এ বিষয়টি নিয়ে অপপ্রচার চালানো হচ্ছে। বলা হয়েছে সেনাবাহিনীকে এ উদ্ধার অভিযান থেকে সরাতে হবে।’জিওসি বলেন, এটা উদ্ধারকর্মীদের পেশাগত দক্ষতাকে উপহাস করার নামান্তর। দেশ ও জাতির যেকোনো দুর্যোগে সেনাবাহিনী জনগণের পাশে ছুটে যায়। সেনাবাহিনী দেখে জনগণ শক্তি পায়, আস্থা পায়। নির্বাচনেও বিভিন্ন দল সেনাবাহিনীর প্রয়োজনীয়তা বোধ করে। তাহলে সেনাবাহিনীর এরকম অভিযান নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার অবকাশ কোথায়? কেন করা হচ্ছে? বিদেশি যেকোনো কুচক্রী মহল বা সানডে মিরর এর মতো পত্রিকা যে ষড়যন্ত্র করেছে, তার বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াতে হবে।’সংবাদ সম্মেলনের পর সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন জিওসি। ফাউল খেলবেন না—এটা কাদের উদ্দেশ্য করে বলছেন? জানতে চাইলে জিওসি বলেন, ‘যারা ষড়যন্ত্র করে আমাদের শেষ আশ্রয়স্থল সেনাবাহিনীকে নিয়ে। সাংবাদিক সাইমন রাইট একা বাংলাদেশে আসতে পেরেছেন, সেটা আমি বিশ্বাস করি না। কেউ তাঁকে সহায়তা করেছে। তারা সেনাবাহিনী ও দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেছে। আমি তাঁদের বিচার চাই।’ষড়যন্ত্রকারী কারা? জবাবে সারওয়ার্দী বলেন, ‘আমরা ষড়যন্ত্র প্রতিহত করতে গেলে উদ্ধার ব্যাহত হতো। আপনারা খুঁজে বের করুন কারা ষড়যন্ত্র করছে। বিদেশ থেকে কীভাবে সাংবাদিক আনা হয়েছে। এসব খুঁজে দেখা হোক।’একটি পত্রিকার অনলাইনে এ খবর আগেই ছিল, কেন প্রতিবাদ করেননি? জিওসি বলেন, ‘এটা আমাদের নজরে আসেনি। সানডে মিরর খবর প্রকাশের পর আমরা সেটা জানতে পারি। তখন খুঁজে দেখি,সানডে মিরর এর বক্তব্য ওই অনলাইনের অনুবাদ ছাড়া আর কিছু নয়।’ |
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সাবেক সোভিয়েত রাজ্য বেলারুশে আগামী সপ্তাহে তিন দিনের সরকারি সফরে যাচ্ছেন। এর মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে সামরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করছে বেলারুশ। প্রতিরক্ষা ও কূটনৈতিক সূত্রগুলো জানায়, বেলারুশ সামরিক সরঞ্জাম ও প্রযুক্তি সরবরাহের পাশাপাশি বাংলাদেশের সঙ্গে যৌথভাবে সামরিক শিল্প প্রকল্প প্রতিষ্ঠায় আগ্রহী।সামরিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে এসব বিষয়ে গত বছরের নভেম্বরে উভয় দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তি গত ১৯ জুন বেলারুশের পার্লামেন্টে অনুমোদিত হয়েছে বলে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা বেলারুশ টেলিগ্রাফ এজেন্সি (বিটিএ) জানিয়েছে। বেলারুশের প্রধানমন্ত্রী মিখাইল মিয়াসিনিকোভিচের ঢাকা সফরের সময় ওই চুক্তি সই হয়েছিল। পার্লামেন্টে অনুমোদিত চুক্তিতে অনেকগুলো ক্ষেত্রে সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার বিষয় নির্দিষ্ট করা হয়েছে। ওই চুক্তিতে সহযোগিতার ক্ষেত্র হিসেবে কন্ট্রোল, কমিউনিকেশন এবং ইলেকট্রোম্যাগনেটিক ওয়ারফেয়ার সিস্টেমসহ সামরিক সরঞ্জাম উৎপাদন এবং আধুনিকায়নের কথা বলা হয়েছে। এ ছাড়া রেডিও-ইলেকট্রনিক সামরিক সরঞ্জাম এবং অস্ত্র ও বিশেষ ধরনের অন্যান্য উপকরণ তৈরির প্রযুক্তি উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তি বিনিময়ের বিষয়ও চুক্তিতে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।বেলারুশ কর্মকর্তাদের উদ্ধৃত করে ওই সব খবরে বলা হয়েছে, সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতার উন্নয়নে একটি আন্তসরকার কমিশন গঠনের প্রস্তাব করবে বেলারুশ। বেলারুশের রাষ্ট্রীয় সামরিক শিল্প কমিটির প্রথম ডেপুটি চেয়ারম্যান, ভ্লাদিমির সুলিমভকে উদ্ধৃত করে বিটিএ জানিয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা শুরু হয়েছে ২০০৫ সালে এবং এ পর্যন্ত বাস্তবায়িত কন্ট্রাক্টেও অর্থমূল্য কয়েক মিলিয়ন ডলার ছাড়িয়ে গেছে। বেলারুশ প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কোকে ইউরোপের সবচেয়ে কঠোর স্বৈরাচারী শাসক হিসেবে পাশ্চাত্যের সংবাদমাধ্যমে বর্ণনা করা হয়ে থাকে। সেই বেলারুশ সরকার-নিয়ন্ত্রিত সংবাদমাধ্যমে বাংলাদেশের সঙ্গে সামরিক সহযোগিতার বিষয় প্রকাশ করা হলেও বাংলাদেশে এ বিষয়ে কোনো তথ্য প্রকাশ করা হয়নি।বেলারুশের রাষ্ট্রীয় সমরসামগ্রী রপ্তানিকারক কোম্পানি বেলটেক এক্সপোর্ট হেলিকপ্টার, সাঁজোয়া যান, আর্টিলারি, হালকা অস্ত্র, আকাশ সুরক্ষার অস্ত্র, গোলাবারুদ এবং সেন্সর সরবরাহ করে থাকে। তবে বাংলাদেশে তারা কী কী সরবরাহ করেছে, তার বিস্তারিত জানায়নি। বাংলাদেশের মিগ-২৯ জঙ্গি বিমানগুলোর আপগ্রেডের জন্যও বেলারুশ প্রস্তাব দিয়েছে বলে দেশটির সরকারি বার্তা সংস্থা জানিয়েছে।বেলারুশের অন্য আরেকটি সংবাদ সংস্থা জানিয়েছে, সামরিক ক্রয় এবং সহযোগিতার বিষয়ে আলোচনার জন্য গত ২৮ জুন বাংলাদেশের একটি সামরিক প্রতিনিধিদল মিনস্ক গেছে। তবে শেখ হাসিনার আসন্ন সফরের সময়ে নির্দিষ্টভাবে কোনো সামরিক ক্রয়চুক্তির সম্ভাবনার কথা নাকচ করে দিয়ে ঢাকায় পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের একজন কর্মকর্তা বলছেন, সামগ্রিকভাবে সহযোগিতার বিষয়টি আলোচনা হতে পারে।সামরিক সূত্রগুলো জানায়, রুশ রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান ইরকুট গত মাসে প্যারিসে অনুষ্ঠিত এয়ার শোতে জানিয়েছে, তারা বাংলাদেশ বিমানবাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ বিমান ইয়াক-১৩০ সরবরাহ করবে। ইরকুটের কর্মকর্তা কনস্টানটিন ববোভিচকে উদ্ধৃত করে একটি সূত্র জানিয়েছে, শত কোটি ডলারের যে রাষ্ট্রীয় ঋণ রাশিয়া বাংলাদেশকে দেবে, তার আওতায় অন্যান্য সামগ্রীর পাশাপাশি ২৪টি প্রশিক্ষণ বিমান কেনার প্রস্তাব এখন বিবেচনাধীন আছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ বৃহস্পতিবার লন্ডন আসছেন। ৮ জুলাই এখান থেকে মিনস্ক যাবেন। লন্ডনে অবস্থানকালে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ব্রিটিশ পররাষ্ট্রমন্ত্রী উইলিয়াম হেগের সাক্ষাতের কথা রয়েছে। এখানে শেখ হাসিনা তাঁর বোন শেখ রেহানার মেয়ে টিউলিপ সিদ্দিকীর বিবাহোত্তর সংবর্ধনায় অংশ নেবেন। |
ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার মোগড়া ইউনিয়নের আওয়ামী লীগের সাবেক নেতা মো. মোবারক হোসেনের বিরুদ্ধে মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় গতকাল বুধবার জবানবন্দি দিয়েছেন রাষ্ট্রপক্ষের পঞ্চম সাক্ষী মো. আলী আকবর। জবানবন্দিতে তিনি একাত্তরের ২২ আগস্ট ৩৩ জন গ্রামবাসীর হত্যার ঘটনায় মোবারক হোসেনের সম্পৃক্ততা ছিল বলে উল্লেখ করেন।বিচারপতি এ টি এম ফজলে কবীরের নেতৃত্বে দুই সদস্যের (এক সদস্য অনুপস্থিত ছিলেন) আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-১-এ আলী আকবরের জবানবন্দি নেন রাষ্ট্রপক্ষের কৌঁসুলি সাহিদুর রহমান। এ সময় মোবারক আসামির কাঠগড়ায় হাজির ছিলেন।আলী আকবর (৬৫) জবানবন্দিতে বলেন, তাঁর গ্রামের বাড়ি ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া থানার টানমান্দাইল গ্রামে। একাত্তরের ১৯ আগস্ট তাঁদের গ্রামের লোকজনের সহায়তায় মুক্তিযোদ্ধারা তিনলাখপীরের সেতুটি ভেঙে ফেলেন। ২১ আগস্ট সেতু ভাঙার বিষয়টি জানাজানি হলে পরদিন রাজাকার মুক্তা মিয়া, বজু মিয়া, মোবারক মিয়া, শহীদ মিয়া পঞ্চায়েত কমিটি গঠনের জন্য গ্রামবাসীকে দাওয়াত দেন। ওই দিন বেলা তিনটার দিকে তিনিসহ গ্রামের ১৩০-১৩২ জন নূর বকশের বাড়িতে জড়ো হন। রাজাকাররা তাঁদের কাছে জানতে চায়, গ্রামের কার কার আত্মীয়স্বজন মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছেন। ইতিমধ্যে পাকিস্তানি সেনারা ওই বাড়ি ঘিরে ফেলে। একপর্যায়ে রাজাকাররা তাঁদের (সেখানে উপস্থিত গ্রামবাসীকে) দড়ি দিয়ে বেঁধে ছয়টি নৌকায় তুলে গঙ্গাসাগর দিঘির পাড়ে পাকিস্তানি সেনাদের ক্যাম্পে নিয়ে যায়। ওই ক্যাম্পে রাজাকাররা তাঁদের মারধর করে। যাঁদের স্বজন মুক্তিযুদ্ধে গেছেন, তাঁদের তালিকা করে রাজাকাররা পাকিস্তানি সেনাদের কাছে দেয়। ওই তালিকা অনুযায়ী ৩৩ জনকে বাছাই করে তেরঝুড়িতে (রাজ কাচারির হাজতখানা) নিয়ে আটকে রাখা হয়।রাষ্ট্রপক্ষের এই সাক্ষী বলেন, ২২ আগস্ট রাত আটটার দিকে বাছাই করা ওই ৩৩ জনকে গঙ্গাসাগর দিঘির পশ্চিম পাড়ে নেওয়া হয়। সেখানে ওই ৩৩ জনকে দিয়েই গর্ত খুঁড়িয়ে ওই গর্তে তাঁদের দাঁড় করিয়ে ব্রাশফায়ার করে হত্যার পর মাটিচাপা দেওয়া হয়। তাঁদের চিৎকার ও আহাজারি তিনি শুনতে পান।জবানবন্দির শেষপর্যায়ে আসামির কাঠগড়ায় থাকা মোবারক হোসেনকে শনাক্ত করেন আলী আকবর। পরে সাক্ষীকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী আহসানুল হক। জেরা শেষে এ মামলার কার্যক্রম ১৪ জুলাই পর্যন্ত মুলতবি করেন ট্রাইব্যুনাল। |
আর এক দিন পরেই গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচন। প্রচার-প্রচারণাও শেষ হয়ে যাচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার রাত ১২টায়। শেষ মুহূর্তে এসে গতকাল বুধবার তাই ১৪ দল ও ১৮ দল-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী এবং তাঁদের জোটের নেতারা ব্যস্ত ছিলেন ভোটারদের নিজের দিকে টানতে। এ জন্য তাঁরা যেমন নিজেদের গুণকীর্তন করছেন, তেমনি পরস্পরের বিরুদ্ধেও পাল্টাপাল্টি প্রচারণা চালাচ্ছেন। এ জন্য গণসংযোগ ও সংবাদ সমেঞ্চলন করা এবং লিফলেটও ছড়ানো হচ্ছে। বিএনপিসহ ১৮ দল-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী এম এ মান্নান গতকাল সকালে গাজীপুর সদরের নাওজোড় থেকে কোনাবাড়ী পর্যন্ত পোশাক তৈরির বিভিন্ন কারখানায় গিয়ে ভোট চান। এর আগে তিনি চান্দনা চৌরাস্তায় নির্বাচনী কার্যালয়ে সাংবাদিকদের বলেন, নির্বাচনের ফল নিজেদের পক্ষে নিতে আওয়ামী লীগ তাঁর বিরুদ্ধে নানা অপপ্রচার চালাচ্ছে। তাঁকে বলা হচ্ছে দুর্নীতিবাজ। তিনি নাকি কর দেন না। এ সবই ষড়যন্ত্র। মান্নানের পক্ষে ভোট চেয়ে গতকাল দুপুরে যৌথ সংবাদ সমেঞ্চলন করে জেলা বিএনপি, জাতীয় পার্টি ও হেফাজত। বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও মান্নানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির আহ্বায়ক আ স ম হান্নান শাহর পরিচালনায় অনুষ্ঠিত সংবাদ সমেঞ্চলনে বক্তব্য দেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য তরিকুল ইসলাম, যুগ্ম মহাসচিব মিজানুর রহমান, জাগপার সভাপতি শফিউল আলম প্রধান, হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নায়েবে আমির আহমাদ উল্লাহ আশরাফ, বিএনপির কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক (ঢাকা) ও জেলা সভাপতি ফজলুল হক, সাধারণ সম্পাদক কাজী ছাইয়েদুল আলম, জেলা জাতীয় পার্টির সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম। সংবাদ সমেঞ্চলন শেষে তাঁরা বোর্ডবাজার ও টঙ্গী অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে ভোটারদের কাছে গিয়ে ভোট চান।অন্যদিকে আজমত উল্লা খান গতকাল টঙ্গীর পাগাড়, ঝিনু মার্কেট, স্টেশন রোড, নিরাশপাড়া, ফকির মার্কেট, হাজী মার্কেট এলাকায় গণসংযোগ করেন। এ সময় তিনি বলেন, ‘হজের টাকা নিয়ে যিনি (এম এ মান্নান) অনিয়ম করেন, সিটি করপোরেশনের মতো গুরুত্বপূর্ণ একটি দায়িত্ব তাঁর কাছে নিরাপদ নয়। ১৮ বছর সুনামের সঙ্গে আমি আপনাদের সেবা করেছি। আমাকে সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে নির্বাচিত করলে সততার সঙ্গে নগরের উন্নয়ন অব্যাহত রাখব।’আজমত উল্লা বলেন, ‘আমার পক্ষে জনমত দেখে বিএনপি এখন দিশেহারা হয়ে গেছে। তারা এখন আবোল-তাবোল বলছে।’গত কয়েক দিনের মতো গতকালও আওয়ামী লীগের উপদেষ্টামণ্ডলীর সদস্য তোফায়েল আহমেদ ও আমির হোসেন আমুসহ অর্ধশত কেন্দ্রীয় নেতা আজমত উল্লার পক্ষে গাজীপুর ও টঙ্গীতে গণসংযোগ করেন। |
নাম তার লাইলী-মজনু। একই অঙ্গে দুই রূপ। দেখা পাওয়া গেল শেরেবাংলা নগরে বাণিজ্য মেলার মাঠে, জাতীয় বৃক্ষমেলায়। মাঝারি আকারের টবে লাগানো দর্শনধারী এই গাছটি রয়েছে কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারির স্টলে। স্টলের ব্যবস্থাপক শরিফুল ইসলাম জানালেন, থাইল্যান্ড থেকে নতুনই আনা হয়েছে এই আলংকারিক গাছটি।গাছটির এমন অভিনব নামকরণের কারণ হলো এর পাতা। লম্বা ডাঁটার সঙ্গে বিপরীত বিন্যাসে সাজানো ডিম্বাকৃতির মসৃণ পাতাগুলোর ওপরের রং টিয়ে পাখির পালকের মতো সবুজ। কিন্তু উল্টোপিঠ উজ্জ্বল বেগুনি। ছোট ছোট ফুলও হয়। তবে সবুজ-বেগুনি পাতার জন্যই গাছটিকে দেখায় চমৎকার। টবের গাছের দাম ৩০০ টাকা, পলিথিন প্যাকেটে লাগানো চারার দাম ২০০।এ ছাড়া আছে লাল রঙের কদম। এটিও এসেছে থাইল্যান্ড থেকে। দেশে-বিদেশের হরেক রকম ফল, ফুল, মূল্যবান কাঠ আর আলংকারিক লতাগুল্মে যে নিবিড় উদ্যানের মতো পরিবেশের সৃষ্টি হয়েছিল বৃক্ষমেলায় এক মাস ধরে, আজ থেকে তা শেষ হচ্ছে।প্রাকৃতিক পরিবেশের ভারসাম্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে বনায়নের ভূমিকা সম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা এবং বৃক্ষ রোপণে আগ্রহ সৃষ্টির লক্ষ্যে ১৯৯৩ সাল থেকে বন অধিদপ্তরের উদ্যোগে জাতীয় বৃক্ষমেলা শুরু হয়। প্রথমবার এই মেলা হয়েছিল রাজশাহীতে। পরের বছর থেকে রাজধানী ঢাকায় জাতীয় পর্যায়ে বৃক্ষমেলা চলছে নিয়মিত। এর ধারাবাহিকতায় এ বছরও জুনের ৫ তারিখে মেলা শুরু হয়েছে, শেষ হচ্ছে আজ বৃহস্পতিবার। এবার মেলায় সরকারি-বেসরকারি ও ব্যক্তিগত পর্যায়ের মোট ১১০টি প্রতিষ্ঠান অংশ নিয়েছে। মেলার তথ্যকেন্দ্রে জমা দেওয়া প্রতিদিনের বিক্রির তালিকা অনুসারে গত মঙ্গলবার পর্যন্ত মোট সাত লাখ ৭৩ হাজার ৪৯৭টি চারা বিক্রি হয়েছে। এর দাম চার কোটি ২১ লাখ ৮৯ হাজার ৭২৫ টাকা।এ বছর আষাঢ়ের শুরু থেকে তেমন বৃষ্টি না হলেও মেলায় বিক্রি বেশ ভালো হয়েছে বলেই জানালেন বিক্রেতারা। ব্র্যাক নার্সারির সহকারী কর্মকর্তা কবির হোসেন জানালেন, ক্রেতাদের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে ছাদে বড় টবে বা ড্রামে লাগানো যায় এমন চারাই মেলায় বেশি ওঠে। এ ছাড়া ক্যাকটাস, অর্কিড, নানা জাতের পাতাবাহার, ফুল ও আলংকারিক চারার চাহিদাও যথেষ্ট। ফ্ল্যাট বাড়ির ব্যালকনি, বারান্দা বা ড্রয়িংরুমেও এগুলো লাগানো যায়। তাতে বাগান করার শখও মেটে, গৃহসজ্জাতেও বৈচিত্র্য আসে। ব্র্যাকের স্টলে ক্যাকটাসের মধ্যে গোল্ডেন ব্যারেল, রেডক্যাপ, চিতাসহ বিভিন্ন জাতের ক্যাকটাস, ভেন্ডা, কাম্পারা এসব অর্কিডের বিস্তর ছোটবড় চারা রয়েছে। দাম সর্ব নিম্ন ১০০ টাকা থেকে পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত। এ ছাড়া ফুল আছে ৪০০ জাতের। দাম ৫০ টাকা থেকে দুই হাজার টাকা পর্যন্ত।তবে বৃক্ষমেলায় ছোটবড় সবারই দৃষ্টি কেড়ে নেয় আমগাছগুলো। প্রতিটি স্টলেই আছে টবে লাগানো নানা জাতের আমগাছ। তাতে ধরে আছে ছোটবড়, কাঁচা-আধা পাকা হরেক রকমের আম। গতকাল বুধবার বিকেলে মেলায় এসেছিলেন কল্যাণপুর নতুন বাজারের মনোয়ারা বেগম। বাড়ির ছাদে বাগান করেছেন তিনি। আম্রপালি, পালমার, হিমসাগরসহ কয়েক জাতের আম আর লিচুর চারা কিনেছেন বলে জানালেন। বরিশাল নার্সারির ব্যবস্থাপক মোহাম্মদ ইব্রাহিম জানালেন, হাইব্রিড আমের মধ্যে তোতাপুরি, পালমার, আম্রপালি, কোহিতুর, মল্লিকা এসবের চাহিদা বেশি। আকার-প্রকারভেদে আমের চারা মেলে ২০০ টাকা থেকে ৫০০ টাকার মধ্যে। তবে টবে লাগানো ফল ধরা গাছের দাম জাত ও গাছ অনুসারে ৪০ হাজার টাকা পর্যন্ত।বিদেশি ফলের প্রতিও আগ্রহ আছে অনেকের। গাইবান্ধায় জয়িতা নামের স্বাস্থ্য বিভাগের একটি প্রকল্পে কাজ করেন আহমেদ শামিম। গতকাল বৃক্ষমেলায় কৃষিবিদ উপকরণ নার্সারির স্টলে কথা হলো তাঁর সঙ্গে। তাঁর পছন্দ ‘মিশরি ডুমুর’-এর চারা। তিনি জানালেন এর নামই ‘আনজির’। এই ডুমুরগুলো শুকিয়ে রাখা যায়। গতবার ড্রাগন ফলের চারা কিনেছিলেন। এবার ফল ধরেছে। অল্প জায়গায় লাগানো যায় আবার একটু ব্যতিক্রমী এমন ধরনের গাছই তাঁর পছন্দ। তো এ ধরনের গাছও প্রচুর আছে মেলায়। গাছের সঙ্গে আছে সার, বালাইনাশক, বাগান করার নির্দেশিকা ও প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি। ক্রেতারা যার যেমন পছন্দ চারা নিয়ে ফিরছেন বাড়িতে। দিনে দিনে যত্নে বেড়ে উঠবে সেগুলো। হয়তো মহিরুহে পরিণত হবে না ছাদের টবের গাছ, কিন্তু ফল-ফুল দিয়ে যাবে তারা ঠিকই। |
গত মাসে অনুষ্ঠিত চার সিটি করপোরেশনের নির্বাচনে বিজয়ে উজ্জীবিত বিএনপি আশা করছে, সেই বিজয়ের হাওয়া এসে লাগবে গাজীপুরে। যে বিষয়গুলো ওই চারটির বিজয়ে ভূমিকা রেখেছে, সেগুলোই বিচার্য হবে এই নবীন সিটি করপোরেশনে। কিন্তু স্থানীয় আওয়ামী লীগের কথা, গাজীপুর অন্য সিটি করপোরেশনগুলোর মতো নয়। এটি সেই অঞ্চল, যেখানে ১৯৯১ সালের পর আজকের সিটি করপোরেশনে অন্তর্ভুক্ত সংসদীয় আসনে কোনো দিন জয় পায়নি বিএনপি। ২০০১ সালে বিএনপির ভূমিধস বিজয়েও গাজীপুর জেলায় চারটির মধ্যে তিনটি আসন পেয়েছিল আওয়ামী লীগ।বিএনপি-সমর্থিত মেয়র পদপ্রার্থী এম এ মান্নানের নির্বাচন পরিচালনা কমিটির প্রধান সমন্বয়কারী হাসান উদ্দিন সরকারের মতো সাধারণ কর্মীদের মতে, মানুষ ধরে নিয়েছে যে আওয়ামী লীগ জিতবে না, এই ধারণা তাদের নির্বাচনে জেতাবে। বিএনপির আরেক আশার জায়গা জাতীয় পার্টির সমর্থন।সংসদীয় আসন গাজীপুর-২ ও আরও তিনটি আসনের পাঁচটি ইউনিয়ন মিলিয়ে গাজীপুর সিটি করপোরেশন। এই আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ জাহিদ হাসান রাসেল বলেন, করপোরেশন এলাকার প্রায় ৬০ ভাগ ভোটার গাজীপুর-২ সংসদীয় আসনের। গত সংসদ নির্বাচনে এক লাখ ২৫ হাজার ৪৩২ ভোটের বিশাল ব্যবধানে জেতেন তিনি। গত সংসদ নির্বাচনে কোনাবাড়ি, কাউলতিয়া, বাসন, কাশিমপুর, পুবাইলের ভোট যোগ করলে আওয়ামী লীগের ভোটের ব্যবধান দাঁড়ায় এক লাখ ৯২ হাজারের বেশি। ২০০১ সালে বিএনপির গণজোয়ারের সময় সিটি করপোরেশন এলাকার আসনটিতে বিএনপির প্রার্থীর চেয়ে প্রায় ৭৩ হাজার ভোটের ব্যবধানে জয়ী হন বর্তমান সাংসদ জাহিদ হাসানের প্রয়াত বাবা আহসানউল্লাহ মাস্টার। ১৯৯৬ সালেও জিতেছিলেন বিপুল ব্যবধানে। সেই জোয়ারের হিসাব মূল্যায়নে না নিলেও, এটাও তো বিচারে নিতে হয় যে বিএনপি ১৯৯১ সালের পর সিটি করপোরেশন এলাকার কোনো নির্বাচনে জিতেনি। টঙ্গী ও গাজীপুর দুটি পৌরসভায় দীর্ঘদিন ধরে আছেন আওয়ামী লীগের মেয়র ও কাউন্সিলররা।জীবনের প্রতিটি নির্বাচনে আহসানউল্লাহ মাস্টারের কাছে হেরেছেন এম এ মান্নান। ১৯৯০ সালের উপজেলা নির্বাচনে গাজীপুর সদর উপজেলা থেকে মান্নানকে হারিয়ে জয়ী হন তিনি। ১৯৯১ সালে আহসানউল্লাহ মাস্টার মনোনয়ন পাননি। সেই নির্বাচনেই কেবল আবদুল মান্নান জেতেন। গাজীপুর স্থানীয় সরকার বা জাতীয় পর্যায়ের কোনো নির্বাচিত প্রতিষ্ঠানে তিনি নেই ২২ বছর। গাজীপুর-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাংসদ আ ক ম মোজাম্মেল হক বলেন, এম এ মান্নান জীবনের ছয়টি নির্বাচনের পাঁচটিতেই পরাজিত হয়েছিলেন। বারবার পরাজিত প্রার্থীকে মানুষ সাদরে নেবে না। আওয়ামী লীগ নেতা সাইদুর রহমানের কথা, এম এ মান্নান দীর্ঘদিন এলাকায় ছিলেন না। এটা ভোটারদের সিদ্ধান্ত নিতে ভূমিকা রাখবে। তবে তাঁর এই মন্তব্যে একমত নন টঙ্গী উপজেলা বিএনপির সভাপতি এস এম শাহানশাহ আলম। তিনি মনে করেন, আজমত উল্লা দীর্ঘদিন ধরে পৌর এলাকায় তেমন কোনো উন্নয়নকাজ করেননি। জাতীয় বিষয়গুলোর সঙ্গে এসব বিষয় মানুষ বিবেচনা করেই মান্নানকে জিতিয়ে দেবে। |
পছন্দের প্রার্থীকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে নিয়োগ না দেওয়ায় ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ বায়তুল্লাহ কাদরীকে লাঞ্ছিত করেছেন হল শাখা ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা প্রাধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুর করেছেন এবং তাঁকে ‘স্বৈরাচার’ আখ্যা দিয়ে পদত্যাগ করতে বলেছেন।১ জুলাই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় দিবসের রাতে প্রাধ্যক্ষকে লাঞ্ছিত করার এ ঘটনা ঘটে। প্রাধ্যক্ষ বলেছেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পছন্দের প্রার্থীকে চতুর্থ শ্রেণীর কর্মচারী পদে নিয়োগ না দেওয়ায় তাঁকে লাঞ্ছিত করা হয়েছে।অন্যদিকে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা দাবি করছেন, হলের বাথরুমগুলো সব সময় নোংরা থাকে, খেলার সরঞ্জাম নেই, বড় টেলিভিশন না থাকায় অনেক শিক্ষার্থী একসঙ্গে টেলিভিশন দেখতে পারেন না। এসব সমস্যা প্রাধ্যক্ষকে বারবার বলার পরও তিনি কোনো ব্যবস্থা নেননি। এসব কারণে সাধারণ শিক্ষার্থীরা তাঁর বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন।হল সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ জুন হলে স্বাস্থ্যসেবক ও দারোয়ান পদে নিয়োগের জন্য সাক্ষাৎকার নেন হল প্রাধ্যক্ষ। ওই দুটি পদে নিয়োগের জন্য হল শাখা ছাত্রলীগের নেতারা সোহেল রানা ও কামাল উদ্দীন নামে দুজন প্রার্থীর নাম প্রস্তাব করেন। কিন্তু প্রাধ্যক্ষসহ নিয়োগ কমিটি তাদের নিয়োগ দেয়নি, অন্য দুজন প্রার্থী নিয়োগ পান। ওই দিন রাতেই প্রাধ্যক্ষের কক্ষ ভাঙচুর করেন ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা। তাঁরা প্রাধ্যক্ষের নামফলক ভেঙে ফেলেন।ঘটনা তদন্তে হল কর্তৃপক্ষ পরদিন একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে এবং হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি দারুস সালাম শাকিল ও সাধারণ সম্পাদক ইয়াজ আল রিয়াদকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়। তদন্ত করতে প্রাধ্যক্ষ ও আবাসিক শিক্ষকেরা পরদিন রাতে ছাত্রাবাসে গেলে ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করেন। প্রাধ্যক্ষকে ‘ধর ধর’ বলে ধাওয়া করেন তাঁরা। এ সময় তিনি দৌড়ে হলের প্রধান ফটকের সামনে থেকে চলে যেতে বাধ্য হন।হল ছাত্রলীগের কয়েকজন নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, যাঁদের নাম নিয়োগের জন্য প্রস্তাব করা হয়েছিল, তাঁদের সঙ্গে আর্থিক লেনদেন হয়েছে। এ জন্য তাঁদের নিয়োগ দিতে বেপরোয়া হয়ে ওঠেন সংশ্লিষ্ট নেতারা।এ বিষয়ে হল শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি দারুস সালাম শাকিল বলেন, কর্মচারী নিয়োগ নিয়ে কোনো সমস্যা হয়নি। হলে ফুটবল ও টেবিল টেনিসের ব্যাট নেই। বড় কোনো টেলিভিশন নেই। এসব কারণেই প্রাধ্যক্ষের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।প্রাধ্যক্ষ বায়তুল্লাহ কাদরী বলেন, ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের পছন্দের প্রার্থীকে নিয়োগ না দেওয়ায় এত ঝামেলা। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানানো হয়েছে।জানতে চাইলে উপাচার্য আ আ ম স আরেফিন সিদ্দিক বলেন, ‘অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছে। একটি কমিটি বিষয়টি তদন্ত করে দেখছে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’ |
সিটি করপোরেশন নির্বাচনে প্রচারণার শেষ মুহূর্তে এসে প্রার্থীরা নানা চমকপ্রদ আশ্বাস দিলেও ভোটাররা সেসব আশ্বাসে আর বিশ্বাস রাখতে পারছেন না। তাই তাঁরা দেখে-শুনে-বুঝে উপযুক্ত, যোগ্য ও সৎ প্রার্থীকে ভোট দেবেন বলে মনস্থির করেছেন। গতকাল বুধবার গাজীপুর শহরের বিভিন্ন স্থান ঘুরে প্রার্থী ও ভোটারদের সঙ্গে আলাপ করে এ কথা জানা যায়। নির্বাচন কমিশন সূত্রে জানা গেছে, গাজীপুরে মোট ৫৭টি সাধারণ ওয়ার্ডে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৫৬ জন প্রার্থী। আর সংরক্ষিত ১৯টি ওয়ার্ডে ১২৮ জন নারী প্রার্থী। ৫৮৬ জন প্রার্থীর প্রচারণায় সরগরম হয়ে উঠেছে গাজীপুর নগর। শহর ছেয়ে গেছে তাঁদের টাঙানো পোস্টারে। বেলা দুইটা বাজলে শুরু হয় মাইকিং। চলে রাত নয়টা পর্যন্ত। কেউ গান গেয়ে ভোট চান। কেউ বা চান ছড়ার ছন্দে। তাঁদের অনেকেরই কাটছে নির্ঘুম রাত। নগরবাসী বলছেন, কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের প্রতিশ্রুতির শেষ নেই। মেয়র পদপ্রার্থীদের মতো তাঁরাও তৈরি করেছেন নির্বাচনী ইশতেহার। আর তা পৌঁছে দিচ্ছেন সবার হাতে হাতে। বিভিন্ন ওয়ার্ড ঘুরে দেখা গেছে, পাড়া-মহল্লায় চায়ের দোকানে কিংবা খাবারের হোটেলে কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের নিয়েই যেন আলোচনা বেশি। আলাপকালে অনেকেই বলেন, কোনো সমস্যা নিয়ে মেয়রের কাছে যাওয়ার সুযোগ হবে না। এ জন্য কাউন্সিলর নির্বাচনে সবচেয়ে বেশি সতর্ক তাঁরা। ভোটাররা তাই কাউন্সিলর পদপ্রার্থীদের প্রতিশ্রুতিতে আশ্বস্ত না হয়ে তাঁদের চরিত্র, সততা, আদর্শ এবং মেধা ও যোগ্যতা বিবেচনা করে ভোট দেওয়ার কথা বলছেন।২৬ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী আবদুল করিম রাস্তাঘাট নতুন করে নির্মাণের এবং ৯ নম্বর ওয়ার্ডের প্রার্থী শফিকুল আমিন কোনাবাড়ী বিসিক শিল্পনগর এলাকার রাস্তাঘাটের বেহাল অবস্থা দূর করার প্রতিশ্রুতি দেন। তবে ২৬ নম্বর ওয়ার্ডের স্কুলশিক্ষক রেজাউল করিম বলেন, জনগণ এমন প্রার্থী চায়, যাঁরা নির্বাচিত হলেও মানুষের পাশে থাকবেন। |
গাজীপুর সিটি করপোরেশন নির্বাচনে যুক্ত প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের নিয়ে পাল্টাপাল্টি অভিযোগ তুলেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপি।রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, গতকাল বুধবার বিকেলে আজমত উল্লা খানের নির্বাচন পরিচালনা অফিসের সমন্বয়কারী আমানত হোসেন খান অভিযোগ করেন, প্রিসাইডিং কর্মকর্তাদের মধ্যে এখন পর্যন্ত তাঁরা ৩৪ জনকে চিহ্নিত করতে পেরেছেন, যাঁরা ছাত্রদল ও শিবিরের সঙ্গে যুক্ত। তাই এই ৩৪ জনসহ ইসলামী ব্যাংকের যেসব কর্মকর্তা প্রিসাইডিং কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন, তাঁদের নির্বাচনী দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দিতে হবে। অন্যদিকে ৮১ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তাকে নিয়ে অভিযোগ তুলছেন বিএনপি-সমর্থিত প্রার্থী এম এ মান্নান। গত সোমবার বিএনপির প্রার্থীর এজেন্ট সিদ্দিকুর রহমান এই অভিযোগ দেন।সিদ্দিকুর রহমান বলেন, ‘যাঁদের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিয়েছি, তাঁরা অওয়ামী লীগের রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। তাঁদের প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রাখলে বিশেষ দলের পক্ষে তাঁরা কাজ করবেন। সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন হবে না।’রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান বলেন, ‘নির্বাচনে ৩৯২ জন প্রিসাইডিং কর্মকর্তা ঠিক করার সময় সব মেয়র প্রার্থীর সঙ্গে কথা বলা হয়েছে। সবাই তালিকা দেখেছেন। তখন কেউ কোনো আপত্তি করেননি। কিন্তু এখন প্রার্থীরা নানা অভিযোগ দিচ্ছেন। আমরা তাঁদের বলেছি, ঢালাওভাবে না বলে সুনির্দিষ্টভাবে কার বিরুদ্ধে কী অভিযোগ আছে সেটি জানান। তাহলে আমরা ব্যবস্থা নেব। |
সিটি করপোরেশন নির্বাচন উপলক্ষে ৬ জুলাই গাজীপুরের নির্বাচনী এলাকায় সাধারণ ছুটি থাকবে। ওই দিন ওই এলাকার সরকারি-বেসরকারি কোনো প্রতিষ্ঠান খোলা রাখা যাবে না। গাজীপুরের কয়েকটি পোশাক কারখানার শ্রমিকেরা জানিয়েছেন, ৬ জুলাই নির্বাচন উপলক্ষে ছুটির কথা শুনেছেন তাঁরা। কিন্তু মালিকেরা চাইছেন এ জন্য শুক্রবার তাঁদের দিয়ে কাজ করাতে। কয়েকটি পোশাক কারখানায় নির্বাচনের দিনেও কাজ করানোর চেষ্টা চলছে। রিটার্নিং কর্মকর্তা মতিয়ার রহমান গতকাল বুধবার জানান, সেদিন এখানকার কোনো সরকারি প্রতিষ্ঠান-ব্যাংক-বীমা খোলা থাকবে না। গার্মেন্টস ও শিল্প কারখানাগুলোতে সেদিন বাধ্যতামূলক ছুটি রাখতে হবে। |
‘শ্রমিক ছাড়া টাকা দেওয়ার কোনো বিধান নেই। যেসব শ্রমিক টিপসই দেন, তাঁদের উপস্থিতি ছাড়া টাকা দেওয়া কোনোভাবেই সম্ভব নয়। প্রথম সপ্তাহের টাকা বন্ধ করে দিয়েছিলাম। পরে চাপের কারণে আর আটকাতে পারিনি।’কুষ্টিয়ার কুমারখালী উপজেলায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রকল্পের টাকা উত্তোলনে অনিয়মের বিষয়টি এভাবেই অপকটে স্বীকার করেন নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যাংক কর্মকর্তা। তিনি বলেন, ‘এই অনিয়মের সঙ্গে জনপ্রতিনিধিসহ কর্মকর্তারা জড়িত।’ গত অর্থবছরে কুষ্টিয়ার ছয় উপজেলায় অতিদরিদ্রদের জন্য কর্মসংস্থান কর্মসূচির প্রকল্পে তিন কোটি ২৫ লাখ ১০ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল। এর মধ্যে কুমারখালীতে এক কোটি ৩১ লাখ ১৮ হাজার টাকা, ভেড়ামারায় ৭৬ লাখ ৮৬ হাজার টাকা, খোকসায় ৩৯ লাখ ২০ হাজার টাকা, কুষ্টিয়া সদরে ৩৩ লাখ ৬৭ হাজার টাকা, দৌলতপুরে ২৯ লাখ ৪৭ হাজার টাকা এবং মিরপুরে ১৪ লাখ ৬৩ হাজার টাকা বরাদ্দ ছিল।নিয়ম অনুযায়ী, প্রত্যেক শ্রমিক প্রতিদিন কাজ করে ১৭৫ টাকা করে সপ্তাহের পাঁচ দিন হিসাবে ৪০ দিনে সাত হাজার টাকা পাবেন। প্রত্যেক প্রকল্পে শতকরা ৩০ ভাগ নারী শ্রমিক কাজ করার কথা। প্রতি বৃহস্পতিবার শ্রমিকেরা ব্যাংকে গিয়ে চেকের মাধ্যমে টাকা তুলবেন। কিন্তু শ্রমিকদের চেক একত্র করে প্রকল্পের সভাপতিদের ব্যাংকে গিয়ে টাকা ওঠাতে দেখা গেছে।কুমারখালী উপজেলার চাপড়া ইউনিয়নের উত্তর সাওতা গ্রামের রনজুর বাড়ি থেকে মজিবরের বাড়ি পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণে ৬০ জন শ্রমিকের স্থলে ১৩ জন শ্রমিককে কাজ করতে দেখা গেছে। শ্রমিকদের সরদার সবদুল বলেন, ‘চেয়ারম্যান ২৩ জন শ্রমিক দিয়ে কাজ করতে বলিছে।’একই ইউনিয়নের গোসাইডাঙ্গী পাকা রাস্তা থেকে গোরস্থান পর্যন্ত রাস্তা পুনর্নির্মাণে ৩৫ জন শ্রমিকের মধ্যে কাউকে পাওয়া যায়নি। স্থানীয় কৃষক আলী হোসেন বলেন, ‘১৫ দিন আগে ১২-১৫ জন শ্রমিক ১০-১২ দিন কাজ করে চইলি গিছে।’কয়া ইউনিয়নের চরবানিয়াপাড়া, কালোয়া, বাড়াদি, রায়ডাঙ্গা গ্রামের প্রকল্পগুলোতে নির্ধারিত সংখ্যার চেয়ে কম শ্রমিককে কাজ করতে দেখা গেছে। জানতে চাইলে কালোয়া গ্রামের একটি প্রকল্পের কাজের সভাপতি ইউপি সদস্য বকুল হোসেন বলেন, ‘ভাই, চেয়ারম্যানের সঙ্গে কথা বলে আপনার সঙ্গে দেখা করছি।’উপজেলার আরও ১০টি প্রকল্প এলাকা ঘুরে একই রকম চিত্র দেখা গেছে।এ ব্যাপারে জানতে চাইলে কুমারখালী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কামরুন নাহার বলেন, ‘শ্রমিকেরা কাজ করার কথা। কেন শ্রমিক নেই বা কম তা আপনাকে পরে জানাতে পারব।’ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মনিরুজ্জামান অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগ অসত্য ও ভিত্তিহীন বলে দাবি করেছেন। তিনি বলেন, ‘সব কটি প্রকল্প ঘুরে দেখা সম্ভব নয়। তিনটি কাজ দেখেছি। সেগুলো ভালো মনে হয়েছে।’দৌলতপুর উপজেলার হোগলবাড়িয়া, পিয়ারপুর, দৌলতপুর, আদাবড়িয়া ও বোয়ালিয়া ইউনিয়ন ঘুরে প্রকল্পে নির্দিষ্ট পরিমাণের চেয়ে কম শ্রমিক দেখা গেছে। উপজেলার পিআইও সাইদুর রহমান জানান, কাজের মান অনেক ভালো ছিল। কোনো অনিয়ম হয়নি।খোকসার ২৯টি প্রকল্পে ৫৬০ জন শ্রমিকের মধ্যে কয়েকটি প্রকল্প ঘুরে একজন নারী শ্রমিকও দেখা যায়নি।উপজেলার পিআইও রফিকুল ইসলাম জানান, মূলত দুস্থ ব্যক্তিরা এ কাজ করেন। তাঁরা ঠিকমতো মাটি কাটতে পারেন না। উপজেলার সব কটি প্রকল্পে বিভিন্ন সময় মোট ৩৬ জন শ্রমিক অনুপস্থিত পাওয়া গেছে। জেলা ত্রাণ ও দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা কর্মকর্তা বিশ্বনাথ পাল জানান, কিছু অনিয়মের খোঁজ পাওয়া গেছে। সেগুলোর ব্যাপারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
চুয়াডাঙ্গার দামুড়হুদা উপজেলার কার্পাসডাঙ্গা বাজারে খাসজমিতে আটটি দোকানঘর নির্মাণ করছে পুলিশ বিভাগ। এই কাজকে অবৈধ দাবি করে তা বন্ধের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পুলিশ সুপারকে চিঠি দিয়েছেন জেলা প্রশাসক। গত ৩০ জুন এই চিঠি দেওয়ার পরও নির্মাণকাজ চলছে। পুলিশ সুপার এই কাজকে ‘কল্যাণমুখী’ বলে দাবি করেছেন। গত মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা গেছে, কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির পশ্চিম পাশে দামুড়হুদা-মুজিবনগর সড়কের পাশে আটটি দোকানঘর নির্মাণের কাজ চলছে। স্থানীয় ব্যবসায়ীরা জানান, কার্পাসডাঙ্গা হাটের জায়গায় দোকানঘরগুলো নির্মাণ করা হচ্ছে।স্থানীয় বাজার কমিটির সভাপতি কামাল হোসেন বলেন, ‘পুলিশ সুপারের নির্দেশে এসব দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। দোকানের বরাদ্দ নিতে আগ্রহী ব্যক্তিরা ইতিমধ্যে যোগাযোগ করেছেন। যতদূর জেনেছি, প্রতিটি দোকান বাবদ এক লাখ টাকা করে অগ্রিম নেওয়া হচ্ছে।’ কার্পাসডাঙ্গা ইউনিয়ন ভূমি উন্নয়ন কর্মকর্তা আবদুর রশিদ জানান, আরএস ১৪৯৮ দাগের প্রায় আড়াই শতাংশ জমিতে পুলিশ বিভাগ অবৈধভাবে আটটি দোকানঘর নির্মাণ করছে। প্রতিটি দোকান দৈর্ঘ্যে ১৩ ফুট ও প্রস্থে আট ফুট। ১৯ জুন দোকানঘর নির্মাণের কাজ শুরু হলে তিনি পরদিনই দামুড়হুদার সহকারী কমিশনার (ভূমি) ফরিদ হোসেনকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান। ফরিদ হোসেন সরেজমিন তদন্ত শেষে ২৬ জুন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) সোনিয়া আফরিনকে লিখিতভাবে বিষয়টি জানান।আবদুর রশিদ বলেন, স্থানীয় জনসাধারণ ও বাজারের ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে জানা গেছে, পুলিশ সুপার টাকার বিনিময়ে ব্যবসায়ীদের নামে বরাদ্দ দেওয়ার জন্য দোকানঘরের নির্মাণকাজ শুরু করেন। ওই জমি কার্পাসডাঙ্গা হাটের নকশাভুক্ত। কিন্তু বছর খানেক আগে জায়গাটি কাঁটাতারের বেড়া দিয়ে ঘিরে কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির আওতায় নেওয়া হয়েছে। উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) দামুড়হুদা মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আহসান হাবীবকে বিষয়টি নিষ্পত্তি না হওয়া পর্যন্ত ওই স্থাপনা নির্মাণ না করার জন্য লিখিত অনুরোধ করে ২৭ জুন চিঠি দিয়েছেন।সর্বশেষ জেলা প্রশাসক দেলোয়ার হোসাইন ৩০ জুন পুলিশ সুপারকে এক চিঠিতে বলেন, ‘কার্পাসডাঙ্গা হাটের নকশাভুক্ত জমিতে সরকারের অনুমতি না নিয়েই কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ি স্থায়ী দোকানঘর নির্মাণ করছে। স্থানীয় ভূমি কার্যালয়ের কর্মকর্তা নিষেধ করা সত্ত্বেও তা মানা হচ্ছে না। তাই অবৈধভাবে দোকানঘর নির্মাণের কাজ বন্ধ করার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য অনুরোধ করা হলো।’পুলিশ সুপার আবদুর রহিম শাহ চৌধুরী বলেন, জায়গাটি অনেক আগে থেকেই কার্পাসডাঙ্গা পুলিশ ফাঁড়ির সীমানা হিসেবে তারকাঁটা দিয়ে ঘেরা রয়েছে। পুলিশের কল্যাণমুখী কাজের অংশ হিসেবে এখানে দোকানঘর নির্মাণ করা হচ্ছে। দোকান বরাদ্দ বাবদ আর্থিক লেনদেনের বিষয়টি তিনি অস্বীকার করেন। |
পুলিশের সঙ্গে হরতাল-সমর্থকদের ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষের বিচ্ছিন্ন কিছু ঘটনা ছাড়া দেশের বিভিন্ন স্থানে ঢিলেঢালাভাবে হয়েছে ছাত্রশিবিরের হরতাল। শিবিরের কর্মীরা ককটেল বিস্ফোরণ ও গাড়ি ভাঙচুর করেন। শিবির এক বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করেছে, রাজধানীসহ সারা দেশে তাদের ৫১ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।শিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতিসহ গ্রেপ্তার হওয়া নেতাদের মুক্তি ও ‘নিখোঁজ’ নেতাদের সন্ধানের দাবিতে সারা দেশে এ হরতাল ডাকে শিবির।প্রথম আলোর নিজস্ব প্রতিবেদক, আঞ্চলিক কার্যালয় ও প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর:আমাদের ঢাকার নিজস্ব প্রতিবেদক জানান, শিবিরের কর্মীরা ভোরে রাজধানীর ইডেন কলেজের সামনে মিল্ক ভিটার একটি কাভার্ড ভ্যানে আগুন ধরিয়ে দেন। এতে গাড়িচালকসহ দুজন আহত হন। সাড়ে ছয়টার দিকে উত্তর বাড্ডার শাহজাদপুর এলাকায় শিবিরের কর্মীরা পাঁচ-ছয়টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটান। তাঁরা রাস্তায় আগুন ধরিয়ে পিকেটিং করেন। পুলিশ ধাওয়া দিলে দুই পক্ষে সংঘর্ষ হয়। রামপুরার বনশ্রীতে মিছিল বের করলে পুলিশের সঙ্গে শিবিরের কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এ সময় দুজনকে আটক করা হয়। পুলিশের ওপর ককটেল বিস্ফোরণের চেষ্টার অভিযোগে তাঁদের ছয় মাসের কারাদণ্ড দেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।লালমাটিয়া সিটি হাসপাতালের সামনে সকালে পিকেটিং ও রাস্তা অবরোধ করেন হরতাল-সমর্থকেরা। এ সময় তিনটি বাসে আগুন দেওয়া হয়। শনির আখড়ায় ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাছের গুঁড়ি ফেলে অবরোধ করার চেষ্টা করেন শিবিরের কর্মীরা। পুরান ঢাকার কাঠেরপুল ও দয়াগঞ্জ এলাকায়ও রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিংয়ের চেষ্টা করা হয়।এদিকে হরতালের মধ্যেও গতকাল বুধবার জাতীয় বিশ্বদ্যািলয়ের অধীন সারা দেশে ২০১১ সালের তৃতীয় বর্ষ অনার্স পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে অনুষ্ঠিত হয়েছে বলে সরকারি তথ্য বিবরণীতে জানানো হয়েছে। এতে ২০২টি কলেজের এক লাখ ৬২ হাজার ৫১৮ জন পরীক্ষার্থী অংশ নেন।সিরাজগঞ্জ: সিরাজগঞ্জ-রায়গঞ্জ সড়কের বহুলি এলাকায় শিবিরের কর্মীরা অবরোধ করলে পুলিশ গিয়ে তাঁদের সরিয়ে দেয়। পরে শিবিরের কর্মীরা সংঘবদ্ধ হয়ে পুলিশের ওপর হামলা চালান। এ সময় পুলিশ কাঁদানে গ্যাসের শেল ও রাবার বুলেট ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনার চেষ্টা করে। দুই পক্ষের ঘণ্টাব্যাপী ধাওয়া-পাল্টাধাওয়া ও সংঘর্ষে পুলিশের ছয় সদস্য আহত হন।এদিকে বঙ্গবন্ধু সেতু পশ্চিম সংযোগ মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের কামারখন্দ উপজেলার কোনাগাতী, বানিয়াগাতী, নলকা ও তালুকদার মোড় এলাকায় ভোরে মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে অবস্থান নেন শিবিরের কর্মীরা। তাঁরা মহাসড়কের বিভিন্ন স্থানে অবস্থান নিয়ে কমপক্ষে ২০টি গাড়ি ভাঙচুর করেন।চট্টগ্রাম: শিবিরের কর্মীরা চামড়া গুদাম এলাকায় সকালে টহল পুলিশকে লক্ষ্য করে সাত-আটটি ককটেল নিক্ষেপ করেন। এ ছাড়া খাতুনগঞ্জে একটি টেম্পো, জেল রোডে আরেকটি টেম্পো ও ষোলশহরে একটি হিউম্যান হলারে আগুন দেওয়া হয়।নাশকতার অভিযোগে উত্তর হালিশহর জামায়াতে ইসলামীর সভাপতি ফখরে জাহান সিরাজসহ (৫০) নগরের বিভিন্ন এলাকা থেকে পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।সীতাকুণ্ডের মিরেরহাট বটতল, নুনাছড়া ও সীতাকুণ্ড-দক্ষিণ বাইপাস এলাকায় মহাসড়কে গতকাল ভোরে শিবিরের কর্মীরা পিকেটিং করতে চাইলে পুলিশ তাঁদের ধাওয়া দেয়। এ সময় পিকেটাররা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল নিক্ষেপ ও ককটেল ফাটায়। এ ছাড়া অন্তত পাঁচটি গাড়ি ভাঙচুর করে।রংপুর: নগরে আটটি ব্যাটারিচালিত অটোরিকশা ও দুটি ট্রাক ভাঙচুর করেছেন শিবিরের কর্মীরা। এ ছাড়া মঙ্গলবার রাতে কারমাইকেল কলেজে ১৫টি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হয়। পুলিশ শিবিরের পাঁচ কর্মীকে আটক করেছে।বগুড়া: শহরের সাবগ্রামে শিবিরের কর্মীরা সকালে রাস্তায় পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। পরে ছিলিমপুর পল্লী বিদ্যুৎ কার্যালয়ের সামনে বগুড়া-ঢাকা মহাসড়কে টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন তাঁরা। তাঁরা শহরের বিভিন্ন এলাকায় ককটেল ফাটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করেন।নীলফামারী: সদর উপজেলার টুপামারী ইউনিয়নের মাজার এলাকায় দুপুরে একটি পণ্যবাহী ট্রাকে ভাঙচুর চালান হরতাল-সমর্থকেরা।রাজশাহী: শিবিরের কর্মীরা গতকাল ভোরে নগরের সাগরপাড়া এলাকায় শাহ মখদুম কলেজের সামনে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন। পরে পুলিশ গিয়ে রাবার বুলেট ও কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুড়লে তাঁরা ছত্রভঙ্গ হয়ে যান। শালবাগান এলাকায় মিছিল করতে চাইলে পুলিশ তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।খুলনা: খুলনার রূপসা সেতুসংলগ্ন এলাকায় সকালে শিবিরের কর্মীরা রাস্তায় পেট্রল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধের চেষ্টা করেন। এ সময় দুটি ককটেলও ফাটানো হয়।নাটোর: বিএডিসি গুদামের সামনে শিবিরের কর্মীরা সমাবেশ করতে চাইলে পুলিশ বাধা দেয়। এ সময় শিবিরের কর্মীরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুড়লে পুলিশ লাঠিপেটা করে তাঁদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এতে শিবিরের ১০ জন কর্মী আহত হন। এর আগে হরতাল-সমর্থকেরা শহরের কানাইখালী, দীঘাপতিয়া ও বড়াইগ্রামের ধানাইদহ এলাকায় সড়ক অবরোধ করে ১০টি ট্রাক ও অটোরিকশা ভাঙচুর করেন।বরিশাল: শিবিরের কর্মীরা মঙ্গলবার রাতে নগরের সিঅ্যান্ডবি সড়কের সিটি বাসস্ট্যান্ডে একটি গাড়িতে আগুন দেন।চাঁপাইনবাবগঞ্জ: চাঁপাইনবাবগঞ্জ-রাজশাহী ও চাঁপাইনবাবগঞ্জ-সোনামসজিদ সড়কের বিভিন্ন স্থানে সড়কে টায়ার জ্বালিয়ে পিকেটিং করেন শিবিরের কর্মীরা। এ সময় একটি ট্রাকে আগুন দেন তাঁরা।রায়পুর (লক্ষ্মীপুর): রায়পুরের বিভিন্ন স্থানে অন্তত ১৫টি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেছে পিকেটাররা। তারা বিভিন্ন সড়কে গাছের গুঁড়ি ও টায়ারে আগুন জ্বালিয়ে সড়ক অবরোধ করে। রায়পুর-লক্ষ্মীপুর সড়কে স্কুলগামী শিশুদেরও হরতালের সমর্থনে পিকেটিং করতে দেখা গেছে।বাগেরহাট: খুলনা-মংলা সড়কে সিমেন্টবোঝাই একটি ট্রাক ভাঙচুর করে আগুন ধরিয়ে দেন শিবিরের কর্মীরা।জয়পুরহাট: সদর উপজেলার দোগাছী ইউনিয়নের খন্জন্পুর-পাহাড়পুর সড়কের নাকুরিয়ায় রাস্তায় আগুন জ্বালিয়ে অবরোধ করেন হরতাল-সমর্থকেরা। ঘটনাস্থল থেকে শিবিরের দুই কর্মীকে আটক করে পুলিশ।চাঁদপুর: শহরের পানি উন্নয়ন বোর্ড কার্যালয়ের সামনে রাস্তায় টায়ার জ্বালিয়ে বিক্ষোভ করেন হরতাল-সমর্থকেরা। নাশকতার চেষ্টাকালে চাঁদপুর সদরে চারজন ও কচুয়া থেকে একজন শিবিরের কর্মীকে আটক করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়।সিলেট: নগরের বিভিন্ন স্থানে সিএনজিচালিত ও ব্যাটারিচালিত অন্তত ২৫টি রিকশা ভাঙচুর করেন শিবিরের কর্মীরা। নাশকতা এড়াতে শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে পুলিশ মোতায়েন ছিল। |
ভোলায় ঘূর্ণিঝড় মহাসেনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের জন্য বরাদ্দ দেওয়া প্রায় আট কোটি টাকা ফেরত গেছে। প্রশাসনের গাফিলতির কারণে এমনটি হয়েছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফজলুল কাদের মজনু মোল্লা বলেন, বৃহত্তর স্বার্থে জেলা প্রশাসক ইচ্ছে করলে টাকাগুলো ফেরত না দিয়ে কাজে লাগাতে পারতেন। তাঁদের গাফিলতির কারণে এখন গরিব মানুষগুলো দুর্ভোগ পোহাবে।জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘আইন অনুযায়ী ওই টাকা ৩০ জুনের মধ্যে খরচ করতে হতো। সময়ের অভাবে খরচ করতে পারিনি, তাই ফেরত পাঠিয়ে দিয়েছি। মিথ্যা ভাউচার দেখিয়ে টাকা রেখে দেওয়া বেআইনি হতো।’জেলা হিসাবরক্ষণ কর্মকর্তা মফিজুল ইসলাম জানান, ২০ জুনের মধ্যে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তারা (পিআইও) টাকা তুলে নিলেও ৩০ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত খরচের ভাউচার জমা দিতে পারেননি, তাই ব্যাংকের মাধ্যমে টাকা ফেরত পাঠানো হয়েছে।ভোলা সদর উপজেলার পিআইও মোজাম্মেল হক জানান, ৯ জুন মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো প্রথম চিঠিতে বলা হয়, ক্ষতিগ্রস্ত যাদের ঘর দেওয়া হবে, তাদের জমি থাকতে হবে। ২৬ জুন এ নিয়ম প্রত্যাহার করে ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকে ঘর দেওয়া যাবে—এসংক্রান্ত চিঠি আসে। তাই সময়স্বল্পতা ও প্রক্রিয়া করতে দেরি হওয়ায় টাকাগুলো বিতরণ করা যায়নি।জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা আবদুল ওয়াহেদ জানান, ভোলা, বরগুনা ও পটুয়াখালীর ২১টি উপজেলার ঘূর্ণিঝড় মহাসেনে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের পুনর্বাসনে ৩০ কোটি টাকা বরাদ্দ আসে।এর মধ্যে ভোলার সাত হাজার নয়টি পরিবারের জন্য দেওয়া হয় আট কোটি টাকা। জেলার একমাত্র দৌলতখান উপজেলা বরাদ্দের ১৫ লাখ ৯৯ হাজার ৫২ টাকা খরচ করতে পেরেছে। অন্য ছয় উপজেলার সাত কোটি ৮৪ লাখ ৯৪৮ টাকা ফেরত গেছে।দৌলতখানের উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মুস্তাফিজুর রহমান বলেন, ‘৬ জুন বরিশালে বিভাগীয় কমিশনারের কক্ষে মহাসেনে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের পুনর্বাসনের টাকার খবর জানতে পেরে আমরা কাজ শুরু করি। ওই সময় তিন জেলার ২১ উপজেলার প্রশাসনিক কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন। আমরা জুন মাসকে মাথায় রেখে সঠিক সময়ে কাজ করেছি। এ জন্য নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিদের ঘর বুঝিয়ে দিতে সফল হয়েছি।’ �ষয়�8� �s��rাংসা করা হবে।: ��ল�I���s��rামিদন্নেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মোনারুল ইসলাম জানান, সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে তাঁর ভাইকে সভাপতি মনোনীত করেছেন। এ কারণে নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যদের মধ্য থেকে পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়ার সুযোগ নষ্ট হয়েছে। ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজের অভিভাবক সদস্য আরশাদ মিয়া জানান, সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে তাঁর চাচাতো ভাই আহসানুল হাবীবকে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করেছেন। ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম পারভেজ জানান, সাংসদের স্বজনপ্রীতি ও আত্মীয়করণের কারণে দুই উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হচ্ছে না। ফলে তাঁর কর্মকাণ্ডের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। |
নবম ভাষা প্রতিযোগের জাতীয় উৎসব আগামীকাল শুক্রবার বেইলি রোডের ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজে অনুষ্ঠিত হবে। আঞ্চলিক উৎসবে বিজয়ী ৬০০ শিক্ষার্থী এই উৎসবে অংশ নেবে।মাতৃভাষার প্রতি শিক্ষার্থীদের আগ্রহ আরও বাড়ানোর লক্ষ্যে ২০০৫ সাল থেকে আয়োজন করা হচ্ছে এইচএসবিসি-প্রথম আলো ভাষা প্রতিযোগ। দেশব্যাপী শিক্ষার্থীদের মধ্যে এ আয়োজন ব্যাপক উৎসাহ ও উদ্দীপনা সৃষ্টি করেছে। এ বছর অনুষ্ঠিত হচ্ছে ভাষা প্রতিযোগের নবম উৎসব। ইতিমধ্যে দেশের ১০টি অঞ্চলে অনুষ্ঠিত হয়েছে আঞ্চলিক উৎসব। অঞ্চলগুলো হলো মৌলভীবাজার, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, চট্টগ্রাম, যশোর, বরিশাল, কিশোরগঞ্জ, বগুড়া, নীলফামারী এবং ঢাকা (১ ও ২)।সকাল নয়টায় জাতীয় সংগীতের সঙ্গে জাতীয় পতাকা উত্তোলনের মধ্য দিয়ে ভাষা প্রতিযোগের দিনব্যাপী জাতীয় উৎসবের সূচনা হবে। জাতীয় পতাকা উত্তোলন করবেন ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ মনজু আরা বেগম এবং ভাষা প্রতিযোগের পতাকা উত্তোলন করবেন ভাষা প্রতিযোগ পর্ষদের সভাপতি অধ্যাপক আনিসুজ্জামান। সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা রাশেদা কে চৌধূরী, কথাসাহিত্যিক সৈয়দ মনজুরুল ইসলাম, অধ্যাপক মাহবুবুল হক, অধ্যাপক দানীউল হক, এভারেস্ট বিজয়ী মুসা ইব্রাহীমসহ বিভিন্ন কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও শিক্ষকেরা উৎসবে অংশ নেবেন। সংগীত পরিবেশন করবেন বাপ্পা মজুমদার, অদিতি মহসীন, সজীব, রিংকু ও পড়শী। জাদুশিল্পী রাজীব বশাক দেখাবেন জাদু। সকাল আটটায় আঞ্চলিক পর্বের বিজয়ীদের নিবন্ধন শুরু হবে। ৬০ জন বিজয়ীকে জাতীয় উৎসবে পুরস্কৃত করা হবে। |
৭ জুলাই বেলা একটার মধ্যে টার্ম পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা না হলে খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান স্কুলের শিক্ষার্থীরা আমরণ অনশনের হুমকি দিয়েছেন। গতকাল বুধবার দুপুরে এক সংবাদ সম্মেলনে এই হুমকি দেওয়া হয়।সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন মৎস্য ও সমুদ্রসম্পদ বিভাগের শেষ বর্ষের ছাত্র মো. ইমরান হোসেন। সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, জীববিজ্ঞান স্কুলের ডিন নিয়োগ নিয়ে শিক্ষকেরা দুই ভাগে বিভক্ত হয়ে পড়েছেন। নিয়োগ অনিয়ম ও বিধি ভঙ্গের অভিযোগ করে নতুন ডিনের অধীনে একাডেমিক ও প্রশাসনকি কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করছেন না শিক্ষকদের একটি অংশ। বর্তমান ডিনের নিয়োগ-প্রক্রিয়া যথাযথ বলে প্রশাসনের পক্ষে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষকদের অপর অংশ। এর মধ্যে ২৩ জুন টার্ম ফাইনাল পরীক্ষার তারিখ ঘোষণা করা হয়। কিন্তু শিক্ষকদের একটি অংশের অসহযোগিতার কারণে প্রশাসন পরীক্ষা নিতে ব্যর্থ হয়েছে। এ সময় শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে শিক্ষকেরা পরীক্ষা গ্রহণের সিদ্ধান্তের জন্য ২৬ জুন পর্যন্ত সময় নেন। কিন্তু ওই তারিখে তাঁরা কোনো সিদ্ধান্তে আসতে পারেননি। উপাচার্য মোহাম্মদ ফায়েক উজ্জামান বলেন, ‘আমি শিক্ষকদের একাধিকবার অনুরোধ করেছি, ডিন নিয়োগের বিষয়টির সঙ্গে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা বা একাডেমিক কার্যক্রম জিম্মি না করার জন্য। দুঃখজনক হলেও সত্য, তাঁরা সেটা মানছেন না। |
কুষ্টিয়া শহরের ফয়সাল টাওয়ার-৫-এর ১৮টি পরিবারের অর্ধশতাধিক বাসিন্দাকে গত মঙ্গলবার গভীর রাতে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। গত সোমবার মজমপুর এলাকায় পুলিশ লাইনের সামনে পাঁচতলা ভবনের ভূগর্ভস্থ তলার মেঝে ফেটে পানিতে তলিয়ে যাওয়ায় তাঁদের সরিয়ে নেওয়া হয়।এ ঘটনায় জেলা প্রশাসন গণপূর্ত বিভাগের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন মিয়াকে প্রধান করে তিন সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে।জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাতে জেলা প্রশাসক সৈয়দ বেলাল হোসেন, পুলিশ সুপার মফিজ উদ্দীন আহম্মেদ, গণপূর্তের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহীন মিয়া, কুষ্টিয়া পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী ওহিদুর রহমানসহ বেশ কয়েকজন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। পরিদর্শনে ভবনটি ঝুঁকিপূর্ণ ভেবে বাসিন্দাদের রাত একটার মধ্যে অন্যত্র সরিয়ে নেওয়া হয়।গতকাল বুধবার সকাল থেকে ভূগর্ভস্থ তলা থেকে শ্যালো ইঞ্জিন দিয়ে পানি বের করা হচ্ছে। জানতে চাইলে শাহীন মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, ভবন থেকে পানি সেচে ফাটলগুলো শনাক্ত করা হবে। তারপর পানির চাপ পরিমাপ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তিনি বলেন, ধারণা করা হচ্ছে ভবন নির্মাণের সময় ঠিকমতো পাইলিং করা হয়নি। এমনকি নির্দিষ্ট পরিমাণ গভীরে কোনো ভিত ঠিক ছিল না। |
মন্ত্রী আসবেন বলে সড়কে মানুষের জটলা সরানোর নামে থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) লোকজনকে এলোপাতাড়ি পিটুনি দেন। এতে কৃষক লালন মিয়া (২২) নামের এক পথচারীর ডান হাত ভেঙে গেছে। বরগুনার বামনা উপজেলার খোলপটুয়া বাজার মোড়ে গত মঙ্গলবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। উপজেলার পোটকাখালী গ্রামের বাসিন্দা লালন গত দুই দিন ধরে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন।স্থানীয় লোকজন সূত্রে জানা গেছে, প্রাথমিক ও গণশিক্ষামন্ত্রী আফছারুল আমীন মঙ্গলবার একটি বিদ্যালয়ে স্কুল ফিডিং কার্যক্রম উদ্বোধনের জন্য বামনায় আসেন। মন্ত্রীর গাড়ির বহর যাতে নির্বিঘ্নে যেতে পারে, সে জন্য বেলা ১১টার দিকে খোলপটুয়া চৌরাস্তার মোড়ে নিরাপত্তার দায়িত্ব পালন করছিলেন বামনা থানার ওসি মনিরুল ইসলাম। মন্ত্রী চৌরাস্তা অতিক্রম করার ঘণ্টা খানেক আগে থেকেই ওসি লোকজনকে ধাওয়া করে রাস্তার মোড় ফাঁকা করতে থাকেন। এ সময় লালন বাজার থেকে কীটনাশক ও সার কিনে বাড়ি ফিরছিলেন। ওসি তখন পথচারীদের বেধড়ক পেটাচ্ছিলেন। একপর্যায়ে ওসির পিটুনিতে লালন আহত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাঁকে বামনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।বামনা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসা কর্মকর্তা টিটক কুমার বালা বলেন, লালনের ডান হাতের হাড় ভেঙে গেছে। অবস্থা গুরুতর হওয়ায় উন্নত চিকিৎসার জন্য তাঁকে বরিশাল শেরেবাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে স্থানান্তরের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে।ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে ওসি বলেন, ‘আমি আসলে বুঝতে পারিনি এ রকম হবে। লালনের সুচিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিয়েছি।’ বরগুনার পুলিশ সুপার শ্যামল কুমার নাথ গতকাল বুধবার বলেন, ‘বিষয়টি আমার জানা নেই। খোঁজ নিয়ে সত্যতা পেলে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। |
সিরাজগঞ্জের কাজীপুর উপজেলার যমুনা নদীর বাঐখোলা এলাকায় বাঁশ পুঁতে দখলে নিয়ে অবৈধভাবে মাছ শিকার করছেন স্থানীয় কয়েকজন প্রভাবশালী। তাঁরা সেখানে জেলেদের মাছ ধরতে দিচ্ছেন না। ফলে উপজেলার ১৫৮টি জেলে পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ ঘটনায় জেলেরা গত ২২ জুন উপজেলা প্রশাসনের কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।লিখিত অভিযোগ ও উপজেলা প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, প্রভাবশালী ব্যক্তিরা যমুনার শাখা নদীর বাঐখোলা এলাকা ২০ জুন বাঁশ পুঁতে ও লাল পতাকা টাঙিয়ে অবৈধভাবে দখল করে নেন। এ কাজের নেতৃত্বে আছেন গান্ধাইল ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্য সারোয়ার হোসেন ও সাবেক সদস্য আবদুল আজিজ। দখলে নেওয়ার পর তাঁরা রাতের আঁধারে মাছ শিকার করছেন। দিনের বেলায় মাছ ধরতে গেলে প্রভাবশালী ব্যক্তিরা জেলেদের জাল ও নৌকা কেড়ে নিচ্ছেন। ২৪ জুন মাছ ধরার সময় তারাকান্দি গ্রামের বিষ্ণু হালদারের ছেলে অখিল ও নিখিলকে মারধর করে তাঁরা জাল ছিনিয়ে নেন। ঘটনার প্রতিবাদে ওই দিনই জেলেরা এলাকায় মানববন্ধন করেন।লিখিত অভিযোগ পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাফিউল ইসলামের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালত ওই স্থানে অভিযান চালান। এ সময় বাঁশের খুঁটি সরিয়ে ফেলা হয়। কিন্তু আদালত চলে আসার পর তাঁরা পুনরায় বাঁশ পুঁতে ওই এলাকা দখল করে নেন।কাজীপুর মৎস্যজীবী সমিতির সাধারণ সম্পাদক বিমল হাওলাদার অভিযোগ করেন, কাজিপুর উপজেলার তারাকান্দি, ঝুনকাইল ও মেছরা গ্রামের ১৫৮টি জেলে পরিবার প্রতি বর্ষা মৌসুমে নদীর ওই অংশ থেকে মাছ ধরে বিক্রি করে সারা বছরের সংসারের খরচ জোগায়। ১৫ দিন আগে এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিরা অবৈধভাবে লাল পতাকা ও বাঁশ পুঁতে ওই এলাকা দখল করে নিয়েছেন। মাছ ধরতে গেলে জেলেদের জাল ও নৌকা ছিনিয়ে নেওয়া হচ্ছে।সারোয়ার হোসেন ও আবদুল আজিজ নদী দখলের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন। তাঁরা দাবি করেন, নদীর মাঝে চর পড়েছে। ওই চরের মালিক স্থানীয় লোকজন। তাঁরা বাঁশ পুঁতে পতাকা টাঙিয়ে সীমানা নির্ধারণ করেছেন। মাছ ধরার বিষয়ে তাঁরা বলেন, ‘আমরা জেলেদের একটি অংশ দিয়ে মাছ ধরার জন্য বলেছি। কিন্তু তাঁরা আমাদের কোনো অংশ দিতে রাজি নন। তা ছাড়া ইতিপূর্বে তাঁরা মাছ ধরেছেন, এবার আমরা মাছ ধরছি।’ জেলেদের মারধর করার অভিযোগ তাঁরা অস্বীকার করেন।উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা শারমিন আকতার জানান, এ এলাকায় সবার মাছ ধরার সমান অধিকার রয়েছে। তবে মৎস্যজীবীদের অধিকার বেশি। ইউএনও শাফিউল ইসলাম জানান, উভয় পক্ষকে নিয়ে আলোচনায় বসে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হবে। স্থানীয় সাংসদ তানভীর শাকিল বলেন, আলোচনাসাপেক্ষে বিষয়টি মীমাংসা করা হবে।: ��ল�I���s��rামিদন্নেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মোনারুল ইসলাম জানান, সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে তাঁর ভাইকে সভাপতি মনোনীত করেছেন। এ কারণে নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যদের মধ্য থেকে পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়ার সুযোগ নষ্ট হয়েছে। ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজের অভিভাবক সদস্য আরশাদ মিয়া জানান, সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে তাঁর চাচাতো ভাই আহসানুল হাবীবকে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করেছেন। ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম পারভেজ জানান, সাংসদের স্বজনপ্রীতি ও আত্মীয়করণের কারণে দুই উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হচ্ছে না। ফলে তাঁর কর্মকাণ্ডের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। |
গাইবান্ধা-৫ (সাঘাটা-ফুলছড়ি) আসনের সরকারদলীয় সাংসদ এবং আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সভাপতি ফজলে রাব্বী মিয়ার বিরুদ্ধে স্বজনপ্রীতি ও আত্মীয়করণের অভিযোগ উঠেছে। বিশেষ করে তিনি চিঠি (ডিও লেটার) দিয়ে তাঁর আত্মীয়স্বজনকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সভাপতি করেছেন বলে অভিযোগ রয়েছে।ফজলে রাব্বী বলেন, ‘ডিও লেটারের মাধ্যমে আমার কোনো আত্মীয়স্বজনকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সভাপতি করা হয়নি। যেসব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ার বিষয়ে আমার ও আমার আত্মীয়স্বজনের অবদান কিংবা ভূমিকা আছে, সেসব প্রতিষ্ঠানে তাঁদের সভাপতি করা হয়েছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘নিয়োগ-বাণিজ্যের অভিযোগ ঠিক নয়। আমি যেসব প্রতিষ্ঠানে সভাপতির দায়িত্ব পালন করছি, সেগুলোয় নিয়ম অনুযায়ী লোক নিয়োগ করা হয়েছে।’সাংসদের নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান সূত্রে জানা গেছে, সাংসদের ডিও লেটারের মাধ্যমে তাঁর ভাগিনা জাকির হোসেন সাঘাটা উপজেলার কচুয়াহাট বালক উচ্চবিদ্যালয় ও কচুয়াহাট শহীদ এইচআরএম বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সভাপতি হয়েছেন। এ ছাড়া সাংসদের ডিও লেটারের মাধ্যমে তাঁর মেয়ের শ্বশুর মজিবর রহমান একই উপজেলার সন্যাসদহ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে, ছোট ভাই ফেরদৌস রাব্বী শিমুলবাড়ি হামিদন্নেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে, চাচাতো ভাই আজিজুল ইসলাম ভরতখালি উচ্চবিদ্যালয়ে, সংসদের ঘনিষ্ঠ বলে পরিচিত নাসিরুল আলম বোনারপাড়া ইসলামিয়া উচ্চবিদ্যালয়ে ও লুৎফর রহমান হলদিয়া বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ে, মেয়ে ফারজানা রাব্বী ফুলছড়ি উপজেলার বুড়াইল স্কুল ও কলেজে, ভাতিজা হাবিবুর রহমান ফুলছড়ি পাইলট উচ্চবিদ্যালয়ে পরিচালনা কমিটির সভাপতি নিয়োগ পেয়েছেন। এসব ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠানগুলোয় সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালনের বিষয়টি জেলা শিক্ষা কার্যালয় নিশ্চিত করেছে।সাঘাটা উপজেলার বোনারপাড়া ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা কমিটির সাবেক সদস্য তৌহিদুজ্জামান জানান, সাংসদ নিজে বোনারপাড়া ডিগ্রি কলেজ পরিচালনা কমিটির সভাপতি। প্রভাব খাটিয়ে তিনি তাঁর ছোট ভাই ফরহাদ রাব্বীকে বোনারপাড়া কলেজের উপাধ্যক্ষ ও চাচাতো ভাই আহসানুল হাবীবকে ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজের উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ দিয়েছেন। এ ছাড়া তিনি দুই উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে তাঁর আত্মীয়স্বজন ও সমর্থকদের সভাপতির দায়িত্ব দিয়ে শিক্ষক নিয়োগ বাণিজ্যে জড়িয়ে পড়েছেন।বুড়াইল স্কুল ও কলেজের অধ্যক্ষ ইব্রাহীম আকন্দ জানান, বিধি অনুসরণ করে সভাপতি নির্বাচনের জন্য তিন ব্যক্তির নাম শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হয়। অথচ সাংসদ তাঁর মেয়েকে সভাপতি নির্বাচিত করার জন্য দিনাজপুর শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান বরাবরে চিঠি (ডিও লেটার) দেন।সাঘাটার শিমুলবাড়ি হামিদন্নেছা বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের অভিভাবক সদস্য মোনারুল ইসলাম জানান, সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে তাঁর ভাইকে সভাপতি মনোনীত করেছেন। এ কারণে নির্বাচিত অভিভাবক সদস্যদের মধ্য থেকে পরিচালনা কমিটির সভাপতি হওয়ার সুযোগ নষ্ট হয়েছে। ফুলছড়ি ডিগ্রি কলেজের অভিভাবক সদস্য আরশাদ মিয়া জানান, সাংসদ প্রভাব খাটিয়ে তাঁর চাচাতো ভাই আহসানুল হাবীবকে উপাধ্যক্ষ পদে নিয়োগ করেছেন।ফুলছড়ি উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সেলিম পারভেজ জানান, সাংসদের স্বজনপ্রীতি ও আত্মীয়করণের কারণে দুই উপজেলার অধিকাংশ শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় নির্বাচনের মাধ্যমে পরিচালনা কমিটির সভাপতি নির্বাচিত হচ্ছে না। ফলে তাঁর কর্মকাণ্ডের কারণে দলের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন হচ্ছে। |
কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর গ্রামে গত মঙ্গলবার রাতে বিজিবি ও গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে বিজিবির পাঁচ সদস্যসহ ১০ জন আহত হয়েছেন। আহত ব্যক্তিদের মধ্যে গ্রামের দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন।কুড়িগ্রাম ৪৫ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল জিয়াউল হক বলেন, বিজিবির সদস্যরা চোরাই মালামাল উদ্ধার করতে গেলে চোরাকারবারিরা তাঁদের ওপর হামলা চালিয়ে একটি এসএমজি ভেঙে ফেলে। আত্মরক্ষার্থে বিজিবি গুলি চালাতে বাধ্য হয়েছে।গ্রামের কয়েকজন বাসিন্দা সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত আটটার দিকে বিজিবির পাঁচ সদস্যের একটি দল ওই গ্রামের বাবলু মিয়ার বাড়িতে যায়। তারা বাড়িতে তল্লাশি চালাতে থাকলে বাবলুর স্ত্রী দুলালী বেগম গেটে তালা লাগিয়ে চিৎকার করতে থাকেন। চিৎকার শুনে প্রতিবেশীরা লাঠি ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে এসে বাড়ির পেছন দিক দিয়ে ঢুকে বিজিবির সদস্যদের ওপর হামলা চালান। তাঁরা বিজিবির একটি এসএমজি ভেঙে ফেলেন। তাঁদের ছোরার আঘাতে নায়েক সুবেদার আবদুস সামাদ আহত হন। গ্রামবাসীর হামলায় বিজিবির বাকি চার সদস্যও আহত হন। এ সময় বিজিবি দুটি ফাঁকা গুলি ছোড়ে। গ্রামবাসীর কয়েকজন অস্ত্র কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করলে দুটি গুলি বের হয়ে ওই গ্রামের কায়ছার আলীর স্ত্রী আঞ্জু (৩০) ও তহিদুল ইসলাম (৩৫) গুলিবিদ্ধ হন। দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে গ্রামের আরও তিনজন আহত হন। পরে এলাকার শতাধিক নারী-পুরুষ দেশি অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে বিজিবির সদস্যদের ধাওয়া করলে তাঁরা পালিয়ে যান।মঙ্গলবার রাত ১০টার দিকে ঘাটনাস্থলে গেলে বাবলুর স্ত্রী দুলালী বেগম বলেন, ‘বিজিবির সদস্যরা বাড়িতে ঢোকার পর আমি চিৎকার করলে গ্রামবাসী ছুটে আসে। অবস্থা বেগতিক দেখে বিজিবির সদস্যরা চারটি গুলি করে পালিয়ে যায়।’কাশিপুর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মনিরুজ্জামান বলেন, বিনা কারণে গ্রামবাসীর ওপর হামলা দুঃখজনক। |