নতুন দিল্লিতে সোমবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে নেদারন্যান্ডসের মহারানী ম্যাক্সিমা সাক্ষাৎ করেন। উন্নয়নমূলর বিভিন্ন কাজের জন্য অর্থ-সহায়তার লক্ষ্যে রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিবের বিশেষ দূত হিসেবে তিনি ভারত সফরে রয়েছেন। মহারানী ম্যাক্সিমা এই উদ্যোগগুলির সাফল্যের প্রশংসা করেন। উভয় নেতাই বিশ্বব্যাপী অর্থ-ব্যবস্হার অগ্রগতির বিষয়ে আলোচনা করেন। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাকেন্দ্রের উদ্বোধনকালে আশা কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। একটি আদর্শ অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র পরিদর্শন করে সেখানকার অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এবং পুষ্টি অভিযানের সুফলভোগী ছেলে-মেয়েদের সঙ্গেও আলাপচারিতায় মিলিত হন তিনি। আদিবাসী সম্প্রদায়গুলির ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সূচনা করেন ‘বন-ধন যোজনা’র। ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে ছোটখাট বনজ উৎপাদনের বিপণনের ব্যবস্থা রয়েছে এই কর্মসূচির আওতায়। এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে শ্রী মোদী ভানুপ্রতাপপুর-গুদাম রেলপথটি উৎসর্গ করেন জাতির উদ্দেশে। দাল্লি রাজারা এবং ভানুপ্রতাপপুরের মধ্যে একটি ট্রেন যাত্রারও আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন তিনি। বিজাপুর হাসপাতালে উদ্বোধন করেন একটি ডায়ালিসিস কেন্দ্রের। এক জনসমাবেশে ভাষণদানকালে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রাম করে যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাদের উদ্দেশে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ঐ অঞ্চলে নকশাল ও মাওবাদী হানায় নিহত প্রতিরক্ষা কর্মীদের উদ্দেশেও শ্রদ্ধা জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন যে এর আগে ‘শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি রারবান মিশন’ এবং ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনা’ নামে দুটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়ন কর্মসূচির সূচনা করা হয়েছিল ছত্তিশগড় রাজ্য থেকে। আর আজ এই রাজ্যটি থেকে সূচিত হচ্ছে ‘আয়ুষ্মান ভারত’ এবং ‘গ্রাম স্বরাজ অভিযান’ নামে আরও দুটি কর্মসূচি। গত চার বছরে কেন্দ্রীয় সরকার রূপায়িত বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচির সুফল যাতে সমাজের দরিদ্র এবং অবহেলিত মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতেই ‘গ্রাম স্বরাজ অভিযান’-এর সূচনা। এই অভিযানটি আজ থেকে শুরু হয়ে চলবে আগামী ৫ মে পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের কোটি কোটি মানুষের হৃদয়ে আশা-আকাঙ্ক্ষার জন্ম দিয়েছিলেন বাবাসাহেব আম্বেদকর। বিজাপুরে এদিনের এই অনুষ্ঠান আয়োজনের তাৎপর্য ব্যাখ্যা করতে গিয়ে শ্রী মোদী বলেন, দেশের যে ১০০টি জেলা এখনও উন্নয়নের নিরিখে পিছিয়ে থাকা সত্ত্বেও উন্নয়ন প্রচেষ্টার জন্য উন্মুখ, বিজাপুর হল তারই অন্যতম। পিছিয়ে পড়া এই জেলাগুলি উচ্চাকাঙ্ক্ষী জেলা রূপে পরিগণিত হোক, এই তাঁর কামনা। ভবিষ্যতে এই সমস্ত জেলা আর কখনওই অনগ্রসর বা অন্যের ওপর নির্ভরশীল হয়ে থাকবে না। দেশের ১১৫টি জেলায় যে এক বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে কর্মসূচি রূপায়ণে সচেষ্ট রয়েছে তাঁর সরকার, একথাও প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি। কর্মসূচি রূপায়ণের প্রথম ধাপেই প্রাথামিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসা হবে বলে ঘোষণা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন,দেশের ১.৫ লক্ষ প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রকে উন্নতমানের স্বাস্থ্য ও চিকিৎসাকেন্দ্রে রূপান্তরিত করা হবে। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলি দরিদ্র সাধারণ মানুষের কাছে পারিবারিক চিকিৎসার সুযোগ পৌঁছে দেবে। শ্রী মোদী বলেন, ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কর্মসূচির পরবর্তী লক্ষ্য হবে চিকিৎসার জন্য দরিদ্র সাধারণ মানুষকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আর্থিক সহায়তাদান। ছত্তিশগড়ের মুখ্যমন্ত্রী ডঃ রমন সিং-এর বিশেষ প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে গত ১৪ বছর ধরে এই রাজ্যে নানা ধরনের উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রূপায়িত হচ্ছে। বিশেষত, সুকমা, দান্তেওয়াড়া এবং বিজাপুরের মতো দক্ষিণ জেলাগুলিতে যে উন্নয়ন প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত হয়েছে, তার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। ঘোষণা করেন যে বস্তার জেলাকেও অনতিবিলম্বে একটি অর্থনৈতিক উন্নয়ন কেন্দ্রের স্বীকৃতি দেওয়া হবে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে আঞ্চলিক স্তরে যে ভারসাম্যহীনতা রয়ে গেছে, তা দূর করতে সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসারের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি। প্রসঙ্গত তিনি উল্লেখ করেন এদিনের উদ্বোধন করা সংযোগ ও যোগাযোগ প্রকল্পগুলির কথা। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’, ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’ এবং ‘উজ্জ্বলা’ যোজনার মতো কর্মসূচিগুলি দেশের মহিলাদের প্রভূত কল্যাণসাধন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে শ্রীশৈলম-এ রাষ্ট্রীয় জনজাগৃতি ধর্মসম্মেলনে ভাষণ দিয়েছেন। উগাড়ি উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সবাইকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এটিনতুন করে শুরু করার এবং নতুন আশার উ ৎ সব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা এবং সময়সীমার মধ্যেবিভিন্ন ধরনের প্রকল্প রূপায়ণের কাজ করে যাচ্ছে। এইপ্রসঙ্গে তিনি জন-ধন অ্যাকাউন্ট খোলার কাজ, দরিদ্রদের জন্য বিমার ব্যবস্হা,উজ্জ্বলা গ্যাস যোজনা, মুদ্রা যোজনা এবং প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা অগ্রগতির কথাতুলে ধরেন। শ্রীমোদী বলেন যে আমাদের দেশে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজের গতি উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধিপেয়েছে। তিনি আয়ুষ্মান ভারত এবং জাতীয় পুষ্টি মিশনের কথা-ও উল্লেখ করেন। তিনিবলেন, স্বচ্ছ ভারত অভিযান কর্মসূচি রূপায়ণের ফলে দেশে পরিচ্ছন্নতা কাজের পরিধিউল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যেকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সরকারি কাজেরজন্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে দেশীয়ভাবে উত্পাদিত লোহা ও ইস্পাতের পণ্যকে অগ্রাধিকারদেওয়ার নীতির অনুমোদন দিল| দেশগঠন ও দেশীয় উত্পাদনের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীর লক্ষ্য ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’-কেপ্রতিপাদন করার জন্য এই নীতি| অগ্রাধিকার দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে এই নীতিতে| যেসব দর-প্রস্তাবএখনও খোলা হয়েনি, সে ধরনের সমস্ত সরকারি দরপত্রের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য হবে এই নীতি| কোনো কারণে যদি কোনো উত্পাদনকারী অসন্তুষ্ট হন, তাহলেইস্পাত মন্ত্রকের অধীনে গঠিত অভিযোগ নিষ্পত্তি কমিটি সুনির্দিষ্ট সময় অর্থাত চারসপ্তাহের মধ্যে সেই অভিযোগের নিষ্পত্তি করবে| যেখানে সুনির্দিষ্ট মানের ইস্পাত দেশে উত্পাদিত হচ্ছেনা, অথবা প্রকল্পের চাহিদা অনুসারে পরিমাণ মত ইস্পাত দেশীয় উত্স-এর মাধ্যমে পূরণকরা যাবে না, সেখানে এ ধরনের সমস্ত ক্রয়ের ক্ষেত্রে মুকুবের সংস্থান রয়েছে এইনীতিতে| নাগাল্যান্ডের প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নাগাল্যান্ডের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নাগাল্যান্ডের জনগণকে প্রতিষ্ঠা দিবসের শুভেচ্ছা। আজসংসদ ভবন সংলগ্ন স্থানে সংবিধান দিবস স্মরণে এক বই প্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আজকের এই অনুষ্ঠানে ভারতীয় সংবিধানের একটি নতুনসংস্করণ এবং ‘মেকিং অফ দ্য কনস্টিটিউশন’ নামে আরেকটি বই প্রকাশ করা হয়। অনুষ্ঠানেবক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ২৬ নভেম্বর দিনটি সংবিধান দিবস রূপেপালিত হয়ে আসছে ২০১৫ থেকেই। পরবর্তী প্রজন্মগুলির উচিৎ সংবিধানের সঙ্গে পরিচিতহওয়া এবং সমসাময়িক প্রেক্ষাপটে তার তাৎপর্য অনুভব ও উপলব্ধি করা। শ্রীমোদী বলেন, ভারতে আমরা যখন সংবিধানের কথা বলি, তখন আমরা স্মরণ করি বাবা সাহেবআম্বেদকরকেও। সংবিধানদিবসের গুরুত্ব প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২৬ নভেম্বর – এই দিনটি ছাড়া ২৬জানুয়ারি অর্থাৎ, সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপনের কথাআমরা ভাবতেই পারতামনা। কালোটাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে দেশের সাধারণ নাগরিকরা আজ বীর সেনানীর মতোই জেহাদ ঘোষণাকরেছেন বলে মন্তব্য করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। যথাসম্ভব ডিজিটাল পদ্ধতির সাহায্যেলেনদেনের কাজে উদ্যোগী হতে তিনি উৎসাহ দেন জনসাধারণকে। আমাদের সেনা বাহিনীর কাছে জাতিই হ’ল সর্বাগ্রে। সমঝোতাটিতে সহযোগিতার চিহ্নিত ক্ষেত্রে কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা, নজরদারি এবং আলোচনার জন্য একটি যৌথ কর্মীগোষ্ঠী গঠনের সংস্হান রয়েছে। এছাড়া কৃৎকৌশল এবং তথ্যে নেটওয়ার্কিং-এর কথাও এতে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাতে তিনি সর্বদাই আনন্দিত হয়েছেন। মায়ানমারের সমৃদ্ধ, আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যের প্রসঙ্গওপ্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন তাঁর এদিনের বক্তব্যে। ভারত সরকার যে দেশে পরিকাঠামো প্রসারের বিষয়টিকেবিশেষভাবে গুরুত্ব দিয়ে চলেছেন, সেকথারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রয়োজনেকঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও যে তাঁর সরকার দ্বিধাগ্রস্ত নয়, একথাও তিনি উচ্চারণকরেন সমাবেশে ভাষণদানকালে। শ্রী মোদী বলেন, পণ্য ও পরিষেবা কর অর্থাৎ জিএসটিদেশে এক নতুন সংস্কৃতি গড়ে তুলতে চলেছে। দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগ ওযোগাযোগ যে ভারত-মায়ানমার সম্পর্কে শক্তি বৃদ্ধি করে চলেছে একথাও উল্লেখ করেনপ্রধানমন্ত্রী তাঁর এদিনের বক্তব্যে। কৃষি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে ভারত এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহিরমধ্যে মউ স্বাক্ষরের একটি প্রস্তাব অনুমোদিত হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে।প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এই বৈঠক আজ এখানে অনুষ্ঠিত হয়। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে উপকৃত হবে দুটি দেশই। এই কেন্দ্রটি আপৎকালীন পরিস্থিতিতে সম্ভাব্য বিপদের ভয়াবহতা সম্পর্কে জনসাধারণকে আগাম সতর্কতা দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে পরিস্থিতির মোকাবিলায় বিভিন্ন এজেন্সির সঙ্গে সমন্বয়সাধনের দায়িত্বও পালন করে। ভারতের বিমা নিয়ন্ত্রণ ও উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ (আইআরডিএআই)-এর সঙ্গে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বিমা কর্তৃপক্ষের মধ্যে যে মউটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে তাতে কর্মপরবর্তী অনুমোদন দিলে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বুধবার মন্ত্রিসভার বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। শুক্রবার ২০১৫-পরবর্তী উন্নয়নসূচি সম্পর্কিত রাষ্ট্রসঙ্ঘের শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী দেখা করেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব বান কি মুন-এর সঙ্গেও। রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তি রক্ষা সংক্রান্ত কাজকর্ম এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার প্রসঙ্গেও তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা হয়। জলবায়ু পরিবর্তন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে উন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলির মধ্যে এ ব্যাপারে আস্থার অভাব রয়েছে। শুধুমাত্র দুষণ নির্গমনের ওপরই নয়, দৃষ্টি দেওয়া উচিত ইতিবাচক লক্ষ্যের দিকেও। জর্ডন-এর রাজা আব্দুল্লা আল হোসেন-এর সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাৎকার অনুষ্ঠিত হয়। আই.এস.আই.এস.-এর বিপদ এবং সন্ত্রাসবাদ প্রসঙ্গে তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা হয়। সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সারা বিশ্বকেই এগিয়ে আসতে হবে বলে প্রধানমন্ত্রী মতপ্রকাশ করেন। ভারত ও রোয়ান্ডার মধ্যে বিমান পরিষেবা চুক্তি সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব গতকাল অনুমোদিত হ’লপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সড়ক পরিবহণ ও সড়ক শিল্পক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের প্রস্তাবে আজ (তেসরা অক্টোবর) অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রসঙ্গত, উপগ্রহ-ভিত্তিক টোল ব্যবস্থা রূপায়ণের জন্য রাশিয়া প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা তৈরি করেছে। অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের ৭০তম বার্ষিকী স্মরণে আজকের এই বিশেষ সমাবেশে বক্তব্য রাখার জন্য আমাকে আমন্ত্রণ জানানোয় পরিষদের সভাপতিকে ধন্যবাদ জানাই। এই উপলক্ষে, রাষ্ট্রসংঘের সকল সদস্যকে জানাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন। অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদ হল রাষ্ট্রসংঘের কাঠামোর মূল স্তম্ভ। যেভাবে রাষ্ট্রসংঘের একটি বিশেষ অঙ্গ হিসেবে এটি গড়ে তোলা হয়েছে, তাতে রাষ্ট্রসংঘের প্রতিষ্ঠাতাদের মূল লক্ষ্যবিন্দু ছিল যে উন্নয়ন, তা প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য সর্বাগ্রে প্রয়োজন আর্থ-সামাজিক বিকাশ, মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন এবং ক্ষুধা ও বঞ্চনার অবলুপ্তি। এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার ক্ষেত্রে অংশগ্রহণের সুযোগ পাওয়ায় ভারত নিজেকে গর্বিত মনে করে। ভারতের বিশিষ্ট নাগরিক আর্কট রামস্বামী মুদালিয়ার ছিলেন অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের মূল স্থপতি। ১৯৪৬ সালে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের উদ্বোধনী অধিবেশনে প্রথম সভাপতি হওয়ার সুযোগ তিনি লাভ করেছিলেন। অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের উদ্বোধনী ভাষণে তিনি বলেছিলেন যে, সেই সময়কার পরিস্থিতি তিনি যা প্রত্যক্ষ করছেন, তাতে পরবর্তী বছরগুলিতেও অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদকে এই ভূমিকা পালন করে যেতে হবে। এই প্রতিষ্ঠান গঠনের পর অতিক্রান্ত হয়েছে ৭০টি বছর। একুশ শতকের ১৫তম বছরটিও আমরা অতিক্রম করে এসেছি। কিন্তু, অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের প্রতিষ্ঠাতাদের প্রত্যাশাপূরণ কি বাস্তবায়িত হয়েছে? রাষ্ট্রসংঘের যে সমস্ত উদ্দেশ্য অপূর্ণ থেকে গেছে এটি হল তার মধ্যে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের ৭০তম বার্ষিকীর এই মূহুর্তটি তাই বিশেষভাবে তাৎপর্যময়। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উন্নয়নকে আজ এক নতুন দৃষ্টিতে দেখা হচ্ছে। নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০৩০ সাল পর্যন্ত যে কর্মসূচি ছকে ফেলা হয়েছে তার পরিপ্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসংঘের ভূমিকা ও উদ্দেশ্যকে আরও সফল করে তোলার সু্যোগ এখন উপস্থিত। অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের এখন দায়িত্বই হল এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করে কর্মসূচিকে সফল করে তোলা। অপেক্ষাকৃত দরিদ্র দেশগুলি যে সমস্ত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন তারই প্রতিফলন ঘটেছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত রচিত কর্মসূচিতে। অন্যদিকে, নিজেদের অর্থনীতির নিরন্তর অগ্রগতি এবং জীবনশৈলীর গুণগতমান রক্ষা করার পাশাপাশি অর্থ ও প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে উন্নয়নশীল দেশগুলির পাশে দাঁড়ানোর গুরু দায়িত্ব এসে পড়েছে উন্নত দেশগুলির ওপর। সহায়সম্পদজনিত কোনও অভাব আমাদের নেই। প্রযুক্তি আমাদের সমাধানের পথ দেখিয়েছে; এক সময় যা ছিল কল্পনারও অতীত। আমাদের চ্যালেঞ্জ হল প্রাপ্ত সম্পদ ও প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জরুরি সমস্যাগুলির মোকাবিলা করে যাওয়া। এটি যে একটি বিশেষ সুযোগ তা আমাদের সকলকেই মনে রাখতে হবে। পরিষদকে নতুনভাবে উজ্জীবিত করে তুলতে হবে, তাকে করে তুলতে হবে কর্মকেন্দ্রিক এবং নীতিগতভাবে প্রাসঙ্গিক, যাতে জনসাধারণের চাহিদা ও আশা-আকাঙ্খা পূরণ বাস্তবায়িত হতে পারে। এই কাজ করতে হলে অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের পথপ্রদর্শনের দর্শন হওয়া উচিৎ দরিদ্রতম মানুষটিরও কল্যাণ, যা আমাদের ভারতীয় চিন্তাভাবনায় ‘অন্ত্যোদয়’ বলে পরিচিত। যতদিন বিশ্বে দারিদ্র্যের অস্তিত্ব থাকবে, যে কোনও দেশেরই হোন না কেন, সেখানকার নাগরিকরা যতদিন পর্যন্ত ন্যূনতম প্রাথমিক সুযোগ-সুবিধা, স্বাধীনতা, সুযোগ ও অধিকার থেকে বঞ্চিত থাকবেন ততদিন অর্থনৈতিক ও সামাজিক পরিষদের কাজ অপূর্ণই থেকে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আর্জেন্টিনায় আয়জিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দেওয়ার প্রাক্কালে এক বিবৃতিতে বলেছেন – “আর্জেন্টিনায় আয়োজিত ত্রয়োদশ জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আমি ২৯শে নভেম্বর থেকে ১ ডিসেম্বর বুয়েন্স আয়ার্স সফর করব। বিশ্বের ২০টি বৃহৎ অর্থনীতির মধ্যে বহুস্তরীয় সহযোগিতা বৃদ্ধি করাই জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের উদ্দেশ্য। আত্মপ্রকাশের পর এক দশকের সময়কালে জি-২০ বিশ্ব জুড়ে এক স্থিতিশীল ও সুস্থায়ী বিকাশের প্রসারে কাজ করেছে। বিগত এক দশকে জি-২০’র কাজকর্ম পর্যালোচনা সহ আগামী দশকগুলিতে নতুন ও আসন্ন চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলার লক্ষ্যে পন্থা-পদ্ধতি খুঁজে বের করতে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির বিভিন্ন নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনার ব্যাপারে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। এছাড়া আমরা বিশ্ব অর্থনীতি ও বাণিজ্যের হালহকিকত, আন্তর্জাতিক আর্থিক কর ব্যবস্থা, কাজকর্মের ভবিষ্যৎ, মহিলা ক্ষমতায়ন, পরিকাঠামো এবং সুস্থায়ী উন্নয়নের বিষয়গুলি নিয়েও আলোচনা করব। বিশ্ব অর্থনীতির বিকাশে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে এমন উদীয়মান অর্থনীতি্ন্র দেশগুলি, আর্থিক সঙ্কটের প্রেক্ষিতে বর্তমানে নজিরবিহীন অর্থনৈতিক ও প্রযুক্তিগত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হচ্ছে। পলাতক আর্থিক অপরাধী এবং সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মে অর্থ যোগানের বিরুদ্ধে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা আরও জোরদার ও সুসংবদ্ধভাবে কাজ করার আশু প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমেদাবাদের ভাস্ত্রাল গাম মেট্রো স্টেশনে প্রধানমন্ত্রী আমেদাবাদ মেট্রোর প্রথম পর্যায়ের যাত্রার সূচনা করেন। তিনি আমেদাবাদ মেট্রোর দ্বিতীয় পর্যায়েরও শিলান্যাস করেন। এই অনুষ্ঠানে ‘এক দেশ এক কার্ড’ মডেল অনুসারে স্বয়ংক্রিয়ভাবে যাত্রী ভাড়া সংগ্রহের জন্য সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত পরিবেশবান্ধব ব্যবস্হা চালু করা হয়। প্রধানমন্ত্রী এরপর মেট্রো রেলের যাত্রার সূচনা করেন এবং মেট্রোয় সফর করেন। আমেদাবাদে প্রধানমন্ত্রী ১২০০ শয্যা বিশিষ্ট নতুন সিভিল হাসপাতাল, ক্যান্সার হাসপাতাল, দন্ত হাসপাতাল এবং চক্ষু হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। আমেদাবাদের জনগণ এখন থেকে আরামপ্রদ এবং পরিবেশবান্ধব পরিবহন ব্যবস্হা ব্যবহার করার সুযোগ পাবেন। এই কার্ড ‘এক দেশ এক কার্ড’-এর পরিকল্পনাকে বাস্তবায়িত করবে। সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এই কার্ড তৈরির ফলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে নির্ভরতা দূর হল। পৃথিবীর মধ্যে যে কয়েকটি দেশে জন-পরিবহনের ক্ষেত্রে ‘এক দেশ এক কার্ড’ ব্যবস্হা চালু রয়েছে, ভারত সেই তালিকায় জায়গা করে নিল। প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের উপজাতি সম্প্রদায়ের মানুষদের জন্য গৃহীত নানা যোজনার কথা উল্লেখ করে। গুজরাট জুড়ে বিশ্বমানের স্বাস্হ্য পরিষেবা পাওয়ার প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন তিনি জানান, ‘মেডিসিটি’ নির্মিত হলে ১০ হাজার রুগি এর থেকে উপকৃত হবেন। নরেন্দ্র মোদী বলেন, দূর্নীতি থেকে জঙ্গিবাদ, যেকোন রকমের বিপদের মোকাবিলায় সরকার দায়বদ্ধ। তিনি জনগণকে আশ্বস্ত করে বলেন, যারা দেশের বিরুদ্ধে কাজ করছে, তাদের জন্য কঠোর ব্যবস্হা নেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও কলম্বিয়ার মধ্যে পর্যটনে সহযোগিতার ক্ষেত্রকে আরও শক্তিশালী করার জন্য সমঝোতা পত্র (মৌ) স্বাক্ষরের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে| ভারতের পর্যটন মন্ত্রনালয় ও কলম্বিয়ার বানিজ্য, শিল্প ও পর্যটন মন্ত্রকের মধ্যে হবে এই চুক্তি| এই সমঝোতা পত্রের মূল বিষয়গুলি হচ্ছে :- ক) পর্যটনের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধি| খ) পর্যটন সংশ্লিষ্ট তথ্য ও ডেটা’র আদান-প্রদান| গ) হোটেল ও ট্যুর অপারেটর সহ পর্যটনের ক্ষেত্রে সমস্ত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়কে উৎসাহিত করা| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার (৯, অক্টোবর) হরিয়ানার সাম্পলা ও রোহতক সফর করেন। দীনবন্ধু স্যার ছোটুরামের একটি মূর্তির আবরন উন্মোচন করেন তিনি। এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী সোনেপতের রেল কোচ মেরামতি কারখানার শিলান্যাস উপলক্ষে এক ফলকের আবরন উন্মোচন করেন। নির্মাণ কাজ শেষের পর এই কারখানা চালু হলে এটি উত্তরাঞ্চলে রেল কামরার মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষনের ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠবে। রেল কামরার মেরামত ও রক্ষনাবেক্ষনের এই কারখানাটি মড্যুলার ও প্রীফোরিকেটেড নির্মান প্রযুক্তি, অত্যাধুনিক যন্ত্রপাতি ও সাজ-সরঞ্জাম এবং পরিবেশবান্ধব পদ্ধতি কাজে লাগিয়ে গড়ে তোলা হচ্ছে। এই উপলক্ষে, প্রধানমন্ত্রী বলেন, চৌধুরি ছোটুরামজী সেই সকল সমাজ সংস্কারকদের একজন, যিনি দেশের স্বার্থে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছিলেন। স্যার ছোটুরামকে পীড়িত ও বঞ্চিত মানুষের স্বার্থে জোরালো বক্তা হিসেবেও তিনি বর্ণনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রেল কোচ মেরামতি কারখানাটি কেবল সোনেপতেরই নয়, সমগ্র হরিয়ানার সার্বিক উন্নয়নেই সহায়ক হবে। যুব সম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্হান সৃষ্টির পাশাপাশি এই কারখানাটি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ছোট শিল্পোদ্যোগীদেরও উপকারে আসবে। কৃষকদেরকে তাদের উৎপাদিত ফসলের লাভজনক মূল্য প্রদানে স্যার ছোটুরাম যে সকল পদক্ষেপ নিয়েছিলেন, তা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষক কল্যাণে কেন্দ্রীয় সরকারও একাধিক উদ্যোগ গ্রহন করেছে। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ প্রকল্পে অগ্রগতির উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই স্বাস্হ্য বিমা কর্মসূচির প্রথম সুফলভোগী হরিয়ানার বাসিন্দা। দুই সপ্তাহে ৫০ হাজারেরও বেশি মানুষ এই প্রকল্পের মাধ্যমে উপকৃত হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, লোক আদালতের মতো আইনী পরিষেবা ব্যবস্থাদির মাধ্যমে জাতীয় আইনী পরিষেবা কর্তৃপক্ষের কাজকর্ম গরিবদের প্রতি তাদের সহানুভূতি এবং ন্যায়বিচারের প্রতি তাদের দায়বদ্ধতার প্রমাণ দেয়। জাতীয় আইনী পরিষেবা দিবস এবং প্রশংসাসূচক দিবস উদযাপন উপলক্ষে নতুনদিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনি ভাষণ দিচ্ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ প্রকল্পের সাফল্যের দিকে এগিয়ে যেতে কৃত সংকল্প এবং এই শপথেরই অঙ্গ হল সকলের ন্যায় কর্মসূচি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সময়ানুগ ও সন্তোষজনকভাবে যাতে আইনী পরিষেবা মেলে সেজন্য লোক আদালত এক বিশেষ উপায় হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিদেশি লগ্নি উন্নয়ন পরিষদের (এফআইপিবি) অবলুপ্তির প্রস্তাবে সম্মতিদিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বুধবার এখানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরনেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে আলোচনা ও মতবিনিময়ের পর এই সম্মতিদানেরসিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। এফআইপিবি তুলে দেওয়ার ফলে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের যেসমস্ত প্রস্তাবে সরকারের অনুমোদন প্রয়োজন, তার প্রক্রিয়াকরণের দায়িত্ব বর্তাবে সংশ্লিষ্টপ্রশাসনিক মন্ত্রক ও দপ্তরগুলির ওপর। এফআইপিবি তুলে দেওয়ার ফলে ভারতেপ্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের মাত্রা ও পরিধির বিশেষ প্রসার ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে।এই পরিস্থিতিতে বিনিয়োগের একটি বিশেষ আকর্ষণীয় গন্তব্য রূপে বিশ্বের সামনে নিজেকেআরও ভালোভাবে তুলে ধরার সুযোগ পাবে ভারত। শ্রীলঙ্কার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মিঃ রনিল বিক্রমসিংহে, আইটিইউ-এর মহাসচিব, অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবৃন্দ, সাইবার মহাকাশ সম্পর্কে নয়াদিল্লিতে আয়োজিত বিশ্ব সম্মেলনে আপনাদের স্বাগতজানাই। আমি একই সঙ্গে স্বাগত জানাই অন্যান্য আর সকলকেই, যাঁরা বিশ্বের দূরদূরান্তথেকে ইন্টারনেটের মাধ্যমে আমাদের এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেছেন। সাইবার মহাকাশ যে বিগত কয়েক দশক ধরে বিশ্ব জগতে এক রূপান্তর সম্ভব করেতুলেছে, সে সম্পর্কে আমরা সকলেই আজ অবগত। আজকের এই সমাবেশে বরিষ্ঠ প্রজন্মের যাঁরাউপস্থিত রয়েছেন, তাঁরা হয়তো স্মরণ করতে পারবেন, ৭০ ও ৮০-র দশকের বড় বড় মেনফ্রেমকম্প্যুটার ব্যবস্থার কথা। কিন্তু তারপর থেকে বদলে গেছে অনেক কিছুই। ই-মেল এবংপার্সোনাল কম্প্যুটার এক নতুন বিপ্লবের সূচনা করেছিল ৯০-এর দশকে। ইন্টারনেট অফ থিংগস এবং আর্টিফিসিয়ালইন্টেলিজেন্সের মতো কথাগুলি এখন লোকের মুখে মুখে। এর অর্থই হ’ল এই যে, রূপান্তরেরধারা এখনও অব্যাহত রয়েছে, বরং তা আরও দ্রুততার সঙ্গে। ডিজিটাল দুনিয়ার এই দ্রুত অগ্রগতির প্রতিফলন ঘটেছে আমাদের ভারতেও। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতের মেধা আজ বিশ্বজনস্বীকৃত। ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তিসংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যথেষ্ট সুনামের অধিকারী বর্তমান বিশ্বে ক্ষমতায়নের একটি উৎস হিসাবে বিকাশ লাভ করেছে ডিজিটালপ্রযুক্তি। দক্ষ পরিষেবার যোগান এবং প্রশাসনিক ও পরিচালনগত ব্যবস্থার পথকে তা আরওপ্রশস্ত করে তুলেছে। শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য সর্বত্রই তার অবাধ গতি। আর এইভাবেইভবিষ্যতের বাণিজ্য ও অর্থনীতিকে এক নতুন রূপে সাজিয়ে তুলতে তা সাহায্য করে চলেছে।এর প্রত্যেকটির মাধ্যমেই সমাজের অপেক্ষাকৃত কম সুবিধাভোগী মানুষের কাছেগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের উপায় আরও সহজ করে তোলা সম্ভব হয়েছে। বৃহত্তর ক্ষেত্রেএক সমান ও সুষম বিশ্ব গড়ে তোলার কাজেও এর অবদান রয়েছে যথেষ্ট। কারণ, বিশ্ব মঞ্চেভারতের মতো একটি বিকাশশীল দেশ উন্নত দেশগুলির সঙ্গে সমানভাবেই প্রতিযোগিতায়অবতীর্ণ হওয়ার সুযোগ লাভ করেছে। যাবতীয় গণ্ডী অতিক্রম করে প্রযুক্তি এখন সততঃ বিকাশশীল। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম্‌’অর্থাৎ সমগ্র বিশ্ব সংসারই এক পরিবারভুক্ত – এই ভারতীয় দর্শনকে তা প্রতিষ্ঠাকরেছে। আমাদের সুপ্রাচীন ও অন্তর্ভুক্তিমূলক ঐতিহ্যের পরম্পরার প্রতিফলন ঘটেছে তারমধ্যে। এখন প্রযুক্তির মধ্য দিয়ে আমরা শুধু আমাদের এই আদর্শের বহিঃপ্রকাশই দেখতেপাই না, সেই সঙ্গে আমরা দেখতে পাই শ্রেষ্ঠ গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রকাশের সঠিকভাষা ও ভঙ্গীগুলিকেও। আমরা ভারতে প্রযুক্তির মানবতামুখী দিকটিকেই বিশেষভাবে প্রাধান্য দিয়ে থাকি।‘জীবনযাপনকে সহজ করে তোলা’র লক্ষ্যে আমরা এর প্রয়োগ ও ব্যবহার করে চলেছি। ডিজিটালপদ্ধতির সাহায্যে ক্ষমতায়ন প্রচেষ্টা ভারত সরকারের এক বিশেষ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য।কারণ, এই লক্ষ্যে আমরা স্থির ও অঙ্গীকারবদ্ধ। “ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ হ’ল বিশ্বেরবৃহত্তম প্রযুক্তিচালিত রূপান্তরমুখী এক কর্মসূচি, যা দেশের নাগরিকদের কাছেডিজিটাল পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার পথ প্রশস্ত করে তুলেছে। নাগরিকদের ক্ষমতায়নপ্রচেষ্টায় আমরা বর্তমানে ব্যবহার করছি মোবাইল শক্তি অর্থাৎ এম-পাওয়ার। আমি নিশ্চিত যে, আপনাদের অধিকাংশই ইতিমধ্যে ‘আধার’ এই নামটির সঙ্গে পরিচিত।এ হ’ল, একজন ব্যক্তির অভিন্ন বায়ো মেট্রিক পরিচিতি। দেশের জনসাধারণকে দীর্ঘক্ষণলাইনে অপেক্ষা করার হাত থেকে রেহাই দিতে এবং জটিল প্রক্রিয়াগত কাজকর্মকে আরও সহজকরে তুলতে এই পরিচিতিকে আমরা বর্তমানে ব্যবহার করেছি। আমরা জন ধন অ্যাকাউন্টগুলিরমাধ্যমে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, আধার এবং মোবাইল ফোন – এই তিনটির সাহায্যে দুর্নীতিহ্রাস করার কাজেও আমরা বিশেষভাবে সফল হয়েছি। এই তিনটি ব্যবস্থার যুক্ত প্রয়োগ ওব্যবহারের আমরা নাম দিয়েছি ‘জ্যাম’ (জেএএম) অথবা জ্যাম ত্রয়ী। ভর্তুকি সহায়তাকেআরও ভালোভাবে সুফল গ্রহীতাদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে ‘জ্যাম’-এর ব্যবহার অন্যপথে অর্থের অপব্যবহার বন্ধ করে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো অর্থের সাশ্রয়ঘটিয়েছে। ‘জীবনযাপনকে সহজ করে তোলা’র ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তি আমাদের কিভাবেসাহায্য করেছে, তার কিছু কিছু দৃষ্টান্ত আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে আগ্রহী। বর্তমানে একজন কৃষিজীবী মানুষ ক্ষেতের মাটি পরীক্ষার ফল, বিশেষজ্ঞেরপরামর্শ এবং উৎপাদিত পণ্যের জন্য আরও ভালো দাম শুধুমাত্র একটি বোতাম টিপেই জানতেপারেন। সুতরাং, কৃষি থেকে আয় ও উপার্জন বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির অবদানঅনস্বীকার্য। এইভাবে তাঁর ব্যবসা-বাণিজ্যেরসম্প্রসারণের সঙ্গে সঙ্গে সরকারি সংগ্রহ প্রচেষ্টায় ব্যয়ের মাত্রাও কমিয়ে আনারকাজে সাহায্য করে চলেছেন। এরফলে, একদিকে যেমন দক্ষতা বৃদ্ধি পাচ্ছে, অন্যদিকেতেমনই সরকারি অর্থের মূল্যমানও নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। বেঁচে থাকার প্রমাণ হিসাবে এখন আর কোনও পেনশনারকে ব্যাঙ্ক আধিকারিকের কাছেব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত হওয়ার প্রয়োজন পড়ে না। এখন তাঁরা আধার-এর বায়োমেট্রিকমঞ্চেই অনায়াসে তাঁদের ‘জীবন প্রমাণ’ দাখিল করতে পারেন। তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে যুক্ত শ্রম শক্তির এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ ও অঙ্গই হলেনদেশের মহিলারা। ডিজিটাল প্রযুক্তি শুধুমার মহিলাদের দ্বারা পরিচালিত বহু নতুন নতুনশিল্প সংস্থার জন্ম দিয়েছে। এইভাবেই লিঙ্গ ক্ষমতায়নের কাজে সাহায্য করেছে তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রটি। ভারতের নাগরিকরা এখন আরও বেশি মাত্রায় গ্রহণ করছেন নগদহীন লেনদেনেরপন্থা-পদ্ধতিগুলি। এজন্য আমরা তৈরি করেছি ‘ভারত ইন্টারফেস ফর মানি’ অর্থাৎ ‘ভীম’অ্যাপটি। কম নগদের এক দুর্নীতিহীন সমাজ গড়ে তুলতে এই অ্যাপটি এক সহায়ক ভূমিকা পালনকরে চলেছে। সরকারি প্রশাসন ও পরিচালনের বিকাশে প্রযুক্তিগত শক্তি কিভাবে সাহায্য করেচলেছে, আমার দেওয়া এই দৃষ্টান্তগুলি থেকেই তা এখন সুপরিস্ফুট। জনঅংশীদারিত্ব অর্থাৎ সংশ্লিষ্ট সকলের সম্মিলিত অংশগ্রহণের মাধ্যমে প্রশাসনও পরিচালন সংক্রান্ত কাজকর্মকে আরও উন্নত করে তোলার লক্ষ্যে আমরা বর্তমানে ডিজিটালপদ্ধতির আশ্রয় গ্রহণ করেছি। ২০১৪’র মে মাসে যখন আমরা দায়িত্বভার গ্রহণ করেছিলাম,তখন অনেকেই বিশেষত, দেশের তরুণ ও যুবসমাজ তাঁদের মত ও চিন্তাভাবনা বিনিময়েরমাধ্যমে দেশের কাজে অংশগ্রহণের জন্য আগ্রহ প্রকাশ করেছিলেন। আমরা দৃঢ়ভাবে বিশ্বাসকরি যে, কোটি কোটি ভারতবাসীর পরিবর্তন ও রূপান্তরমুখী চিন্তাভবনা ভারতকে এক নতুনউচ্চতায় উন্নীত করতে নানাভাবে সাহায্য করে যাবে। এই লক্ষ্যেই আমরা সূচনা করেছি নাগরিকদের জন্য ‘মাই গভ’ পোর্টালটির। বিভিন্নগুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে নাগরিকদের মত ও চিন্তাভাবনা প্রকাশের একটি মঞ্চ হ’ল এইপোর্টাল। বড় বড় নীতি প্রণয়নের কাজেও হাজার হাজার মূল্যবান মতামত, প্রস্তাব ওপরামর্শ এসে পৌঁছেছে আমাদের কাছে। বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির বহু লোগো এবংপ্রতীকচিহ্ন ‘মাই গভ’ মঞ্চটিতে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে জনসাধারণের কাছ থেকে পাওয়া।সত্যি কথা বলতে কি, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের জন্য যে সরকারি অ্যাপটি বেছে নেওয়াহয়েছে, তাও কিন্তু ‘মাই গভ’ মঞ্চটিতে প্রতিযোগিতার মাধ্যমে পাওয়া। দেশের তরুণ ওযুবসমাজের মধ্যে এ ব্যাপারে অভূতপূর্ব সাড়া পেয়েছি আমরা। প্রযুক্তি কিভাবেগণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে পারে, তার একটি বড় উদাহরণই হ’ল ‘মাই গভ’। আরেকটি দৃষ্টান্তের কথা এখন এখানে তুলে ধরা যাক। হিন্দিতে ‘প্রগতি’র অর্থ হ’ল ‘অগ্রগতি’। প্রত্যেক মাসের শেষ বুধবার ‘প্রগতি’র আলোচনা বৈঠকে আমি মিলিত হইশীর্ষস্থানীয় কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে। প্রযুক্তি মানুষেরঅনাগ্রহ কাটিয়ে উঠতে সাহায্য করে। আমাদের নিজ নিজ দপ্তরে বসেই সাইবার দুনিয়ারকল্যাণে বহু গুরুত্বপূর্ণ প্রশাসনিক ও পরিচালনগত বিষয় আলোচনার মাধ্যমে সুরাহা ও সমাধানেরচেষ্টা করি। আমি আপনাদের একথা জানাতে পেরে খুবই আনন্দিত যে, ‘প্রগতি’র মঞ্চেআলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে বৃহত্তর জাতীয় স্বার্থে এবং ঐকমত্যের ভিত্তিতে আমরাদ্রুততার সঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণের কাজে সাফল্য লাভ করে চলেছি। কোটি কোটি ডলারবিনিয়োগের যে সমস্ত পরিকাঠামো প্রকল্প দীর্ঘ সূত্রিতার কারণে অচলায়তনে পরিণতহয়েছিল, তা আবার সঠিক রূপায়ণের পথে ফিরে আসতে পেরেছে ‘প্রগতি’র কল্যাণেই। আমি নিজেও আমার নিজের জন্য নরেন্দ্র মোদী মোবাইল অ্যাপটি গড়ে তোলার কাজেসচেষ্ট হয়েছিলাম। এর মাধ্যমে নাগরিকদের সঙ্গে আমার যোগাযোগ এখন নিবিড়তর হয়েছে। এইঅ্যাপটির মাধ্যমে যে সমস্ত পরামর্শ ও মতামত আমি লাভ করে থাকি, তা সত্যিই যথেষ্টকাজের। বিশ্ব নাগরিকদের সঙ্গে আমাদের এই সমস্ত অভিজ্ঞতা ও সাফল্য বিনিময়েআমরা ভীষণভাবে আগ্রহী। অন্যদিকে, ডিজিটালপ্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহারের মাধ্যমে শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সঠিক আদর্শএবং উদ্ভাবনী সমাধান খুঁজে পেতে ভারত বিশেষভাবে আগ্রহী। যাঁরা অন্যভাবে সক্ষম বাকর্মঠ, তাঁদের ক্ষমতায়নের জন্য সাইবার মহাকাশের ব্যবহারে আমরা আগ্রহী। সম্প্রতি ৩৬ঘন্টার এক হ্যাকাথন-এ বিভিন্ন দপ্তরের মন্ত্রীদের পেশ করা নানা কঠিন সমস্যারসমাধানের পথ বাতলে দিতে পেরেছেন কলেজের ছাত্রছাত্রীরা। বিশ্বের অন্যান্য দেশেরঅভিজ্ঞতা এবং শ্রেষ্ঠ পন্থা-পদ্ধতিগুলি জানার জন্য আমরা বিশেষভাবে উৎসুক। কারণআমরা বিশ্বাস করি যে, সকলে যদি এক সাথে এবং এক যোগে এগিয়ে যেতে পারি, তা হলেইউন্নয়ন তথা অগ্রগতির বাস্তবায়ন সম্ভব। সাইবার মহাকাশ হ’ল উদ্ভাবন প্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। আমাদেরস্টার্ট আপ সংস্থাগুলি বহু দৈনন্দিন সাধারণ সমস্যার সমাধান খুঁজে নিয়ে জনসাধারণেরজীবনযাত্রার মানকে আরও উন্নত করে তোলার কাজে সচেষ্ট হয়েছে। ভারতের স্টার্ট আপপ্রচেষ্টার যে অফুরন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে, তা স্বীকার করতে বিশ্বের বিনিয়োগকর্তারা যে কোনওভাবেই দ্বিধা করবেন না – এ বিষয়ে আমি দৃঢ় প্রত্যয়ী। প্রকৃতিগতভাবে ইন্টারনেট হ’ল অন্তর্ভুক্তিমূলক। সকলের কাছে সমানসুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে পারে ইন্টারনেট। বর্তমান বিশ্বে আলোচনা ও মতবিনিময়েরক্ষেত্রে এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে ফেসবুক, ট্যুইটার এবং ইনস্ট্রাগ্রামব্যবহারকারীদের। সোশ্যাল মিডিয়ার মঞ্চগুলি সাইবার মহাকাশকে সকলের অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে প্রতিনিধিত্বমূলক করে তুলেছে। স্টুডিও থেকে সংবাদ বিশেষজ্ঞরা যে বার্তা পৌঁছেদেন আমাদের কাছে, তাকে অবলম্বন করে নানা অভিজ্ঞতার কথা তুলে ধরা হয় সোশ্যালমিডিয়ায়। বিশেষজ্ঞের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার সমন্বয়ে এই যে পরিবর্তন বা রূপান্তরপ্রক্রিয়া, তা কিন্তু সাইবার জগতেরই এক বিশেষ অবদান। সাইবার নিরাপত্তা ঝুঁকি সম্পর্কেসতর্ক থাকার বিষয়টিকে আমাদের জীবনযাত্রার একটি অংশ হিসাবে মনে করতে হবে। সাইবার হুমকি প্রতিরোধে যোগ্য পেশাদারদের সবদিক দিয়ে প্রস্তুত করে তোলারজন্য প্রশিক্ষণদানের বিষয়টিকে আমাদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। সাইবারহানা প্রতিরোধে সর্বদাই প্রস্তুত ও সতর্ক থাকবেন আমাদের সাইবার যোদ্ধারা। ‘হ্যাকিং’শব্দটির মধ্যেই সন্দেহের বীজ লুকিয়ে রয়েছে। তাই, সাইবার সুরক্ষার বিষয়টি যাতেদেশের যুবসমাজের কাছে এক আকর্ষণীয় পেশা বা জীবিকার সুযোগ হিসাবে উপস্থাপিত করাযায়, তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। ডিজিটাল ক্ষেত্রটি যাতে সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থার ক্রীড়া ক্ষেত্র না হয়ে ওঠে,তা নিশ্চিত করার দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে বিশ্বের সবকটি দেশকেই। সাইবার অপরাধেরপ্রকৃতি ও ধরণ-ধারণ যেভাবে প্রতিনিয়তই বদলে যাচ্ছে, তার মোকাবিলায় নিরাপত্তাসংস্থাগুলির মধ্যে তথ্য বিনিময় ও সমন্বয়ের বাতাবরণ গড়ে তোলা একান্ত জরুরি। গোপনীয়তা অথচ মুক্ত মানসিকতা এবং অন্যদিকে জাতীয় নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলিরমধ্যে এক সূক্ষ্ম ভারসাম্য আমাদের রক্ষা করে চলতে হবে। সেইসঙ্গে, একদিকে যেমনআন্তর্জাতিক এবং মুক্ত বা উদার ব্যবস্থার ভেদ ও বৈষম্যকে আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে,অন্যদিকে তেমনই সুনির্দিষ্ট রাষ্ট্র–কেন্দ্রিক আইনি ব্যবস্থাপনার পথও আমাদের খুঁজেদেখতে হবে। যে ডিজিটাল প্রযুক্তির আগামীদিনে উদ্ভাবন ঘটতে চলেছে, তা আমাদের ভবিষ্যতেরওপর এমন কিছু প্রভাব ফেলতে পারে, যার কথা বা সম্ভাবনা আমরা এখন কল্পনাই করতে পারিনা। তাই স্বচ্ছতা, গোপনীয়তা, আস্থা এবং নিরাপত্তার মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নগুলিসম্পর্কে আমাদের এখন চিন্তাভাবনা করা প্রয়োজন। মানবজাতির ক্ষমতায়নই ডিজিটালপ্রযুক্তির মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। তা যাতে অবিকৃত থাকে, তা নিশ্চিত করা আমাদেরদায়িত্ব। আজকের এই অনুষ্ঠানে বহু পক্ষের মিলিত অংশগ্রহণ একথাই প্রমাণ করে যে, এইবিশেষ মঞ্চটি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিশেষ সাড়া জাগিয়েছে। সহযোগিতারভিত্তিতে এক ব্যবহারিক কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন রাষ্ট্র, শিল্প সংস্থা,শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এবং সুশীল সমাজের একযোগে এগিয়ে আসা উচিৎ। তা হলেই জীবনযাত্রারমান উন্নত করে তোলার উপযোগী এক সুরক্ষিত সাইবার ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। সংখ্যার দিক থেকে এই সম্মেলনটি সম্ভবতঃ এ যাবৎকালের মধ্যে বৃহত্তম একপ্রচেষ্টা। এর উদ্যোগ আয়োজনে যাবতীয় কাজকর্ম সার্বিকভাবে গড়ে তোলা হয়েছে ডিজিটালপদ্ধতিতে এমন তথ্যও রয়েছে আমার কাছে। বিশ্বেরবিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে বাধাবিঘ্নহীনভাবে এক বিশেষঅভিজ্ঞতার অংশীদার হবেন বলে আমি মনে করি। সম্মেলনের আলোচনা সফল ও ফলপ্রসূ হোক, এই শুভ কামনা জানিয়েই আমি আমারবক্তব্য শেষ করলাম। পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং ডিজিটাল ভারত গড়ে তোলার যে উদ্যোগ তিনি গ্রহণ করেছেন তারও প্রশংসা করেন তাঁরা। উপস্থিত সি.ই.ও.’দের অনেকেই ভারতের ‘স্টার্ট আপ’ সেক্টরের ব্যাপারে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করেন এবং শিল্পোদ্যোগের কাজে বিনিয়োগের ইচ্ছাও প্রকাশ করেন। তবে, ভারতে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে কর ব্যবস্থা এবং আমলাতান্ত্রিক বাধাবিপত্তি যে এখনও বিশেষ প্রতিবন্ধকতার কাজ করছে তারও উল্লেখ করেন সি.ই.ও.’রা। ভারতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিনিয়োগের পরিমাণ যে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’ দর্শনের কথা উপস্থিত সি.ই.ও.’দের সামনে তুলে ধরেন। তিনি বলেন, সরকারি ও বেসরকারি ক্ষেত্র ছাড়াও ব্যক্তিগতভাবে শিল্পোদ্যোগ শুরু করা এবং শিল্পোদ্যোগ গড়ে তোলার ওপরও তিনি বিশেষ জোর দিচ্ছেন। তথ্য প্রযুক্তি বিপ্লবের মূলে ‘স্টার্ট আপ’ এবং উদ্ভাবন প্রযুক্তির যে বিশেষ ভূমিকা রয়েছে তারও উল্লেখ করেন তিনি। উপস্থিত সি.ই.ও.’রা ভারতের সম্ভাবনার কথা তুলে ধরার পাশাপাশি এ সম্পর্কে তাঁদের আশা, আস্থা ও বিশ্বাসের কথা ব্যক্ত করায় প্রধানমন্ত্রী বিশেষ সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, সেইসঙ্গে, তাঁদের উদ্বেগের কথাও তাঁরা সুস্পষ্টভাবেই তুলে ধরেছেন। বিভিন্ন দেশে ব্যবসা-বাণিজ্য সহজতর করে তোলার ব্যাপারে বিশ্ব ব্যাঙ্ক সাফল্যের নিরিখে ক্রম অনুযায়ী যে তালিকা প্রস্তুত করেছে, তারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এর ফলে দেশগুলির মধ্যে এক সুস্থ প্রতিযোগিতার বাতাবরণ গড়ে উঠেছে। রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি সরাসরি গ্রাহকের অ্যাকাউন্টে জমা হওয়ার বিষয়টির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরণের সাফল্য বিশ্বের অন্যত্র এই বিশেষ মাত্রায় এখনও উন্নীত হতে পারেনি। রেল, বিমা ও প্রতিরক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকে আরও উদার করে তোলার প্রসঙ্গটিও প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন। কৃষি ও স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিমা প্রকল্প সহ কয়েকটি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন, বৈদ্যুতিন সরঞ্জাম নির্মাণ, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের যন্ত্রপাতি, রেল ও মেট্রো, ‘পরিচ্ছন্ন ভারত’ এবং ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ সহ এমন অনেক ক্ষেত্র রয়েছে, যেখানে বিনিয়োগের সম্ভাবনা প্রচুর। ‘ভারত পরিক্রমা পদযাত্রা’সাফল্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ করে শ্রী সীতারাম কেদিলয়া আজ এখানেদেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ২০১২-র ৯ আগস্ট তিনিকন্যাকুমারী থেকে ভারত পরিক্রমা যাত্রা শুরু করে আবার কন্যাকুমারীতেই এই যাত্রাসম্পূর্ণ করেন এ বছর ৯ জুলাই তারিখে। তাঁর এইপদযাত্রাকালে শ্রী কেদিলয়া অতিক্রম করেন প্রায় ৯ হাজার গ্রাম। তাঁর এই ভারতপরিক্রমার যাত্রা পরোক্ষভাবে পৌঁছে যায় দেশের আরও ২০ হাজার গ্রামে। সফরকালে লক্ষলক্ষ কৃষক এবং গ্রামীণ যুবকদের সঙ্গে আলাপ-পরিচয় ঘটে শ্রী কেদিলয়ার। কেন্দ্রীয়সরকারেরবিভিন্ন মন্ত্রক ও দপ্তরে কর্মরত ৩৮০ জন অধিকর্তা এবং উপ-সচিবদের সঙ্গেপৃথক পৃথকভাবে চার দফায় এক আলোচনা ও মতবিনিময় বৈঠকে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। অক্টোবর মাসের বিভিন্ন দিনে এই বৈঠকগুলির আয়োজন করা হয়। শেষ বৈঠকটিঅনুষ্ঠিত হয় গতকাল, অর্থাৎ ১৭ অক্টোবর। প্রত্যেকটি বৈঠকেই প্রধানমন্ত্রী আলোচনা ওমতবিনিময়ের লক্ষ্যে সময় দেন প্রায় দু’ঘন্টা করে। সরকারিপ্রশাসন ও পরিচালন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা, সরকারি বৈদ্যুতিন বিপণন ব্যবস্থা,স্বাস্থ্য, শিক্ষা, দক্ষতা বিকাশ, কৃষি, পরিবহণ, জাতীয় সংহতি, জলসম্পদ, স্বচ্ছভারত, সংস্কৃতি, যোগাযোগ, পর্যটন এবং দুর্নীতির মতো বিষয়গুলি নিয়ে শ্রী মোদীআলোচনা ও মতবিনিময় করেন সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে। আগামী ২০২২সালের মধ্যে এক ‘নতুন ভারত’ গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে যেতেআধিকারিকদের উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয়সরকারের কাজকর্মে স্থবিরতা প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে। সার্বভৌমস্বর্ণবন্ড প্রকল্পেরবৈশিষ্ট্যগুলি হল:- ৫) সরকারনির্ধারিত সুদেই এই বন্ডগুলিইস্যু করা হবে। দেশীয় এবংআন্তর্জাতিক বাজারের পরিস্থিতিরদিকে নজর রেখেই সুদের হারস্থির করা হবে। বিনিয়োগেরসময় সোনার মূল্য হিসাব করেইস্থির করা হবে সুদের হার। ৬) ডিম্যাটআকারে এবং কাগজপত্রে এই বন্ডকিনতে পাওয়া যাবে। ৭)প্রতি৫, ১০, ৫০, ১০০গ্রাম- এইহিসেবে বন্ড ইস্যু করা হবে। ৮)ভারতীয়রিজার্ভ ব্যাঙ্কের রেফারেন্সরেট অনুযায়ী সোনার দাম স্থিরকরা হবে। স্বর্ণবন্ড ইস্যুকরা কিংবা ভাঙানো উভয় ক্ষেত্রেইএই হার কার্যকর করা হবে। ৯)বিভিন্নব্যাঙ্ক, নন-ব্যাঙ্কিংআর্থিক সংস্থা, ডাকঘর, জাতীয়সঞ্চয় সার্টিফিকেটের (এন.এস.সি.) এজেন্টএবং অন্যান্যরা সরকারের পক্ষথেকে এই স্বর্ণবন্ড বিক্রিবা ভাঙানোর কাজ করতে পারবে। ১০)প্রতিটিবন্ডের মেয়াদ হবে ন্যূনতম ৫- ৭বছর, যাতেসোনার দরে যে কোনও রকম অস্থিরতাথেকে বিনিয়োগকারীদের সুরক্ষাদেওয়া যায়। ১১)ঋণপাওয়ার ক্ষেত্রেও এই বন্ডকেকাজে লাগানো যাবে। ধরিত্রী দিবসে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পৃথিবী’কে আরো সুন্দর করে তোলার দায়বদ্ধতা পুনরায় গ্রহণের আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও মিশরের মধ্যে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষর করার বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। এছাড়া দুই দেশের মধ্যে বিশেষজ্ঞ ও বিজ্ঞানী গবেষকদের সফর যাতাযাত ; কৃষিতথ্য এবং বৈজ্ঞানিক বইপত্র-জার্নাল-পরিসংখ্যান বিনিময় ; কৃষি প্রযুক্তি এবং বীজাঙ্কুর বিনিময় যৌথ উদ্যোগে কৃষি সংক্রান্ত সেমিনার, কর্মশালা ও অন্যান্য আলোচনাসভার আয়োজনের সংস্হান এই সমঝোতার মধ্যে রয়েছে। দু দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে কৃষি সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে একটি যৌথ কর্মীগোষ্ঠী গড়ার কথা বলা হয়েছে। নেপালেরপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী শের বাহাদুর দেউবা গতকাল এখানে সাক্ষাৎ করেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। শ্রী দেউবা-কেস্বাগত জানিয়ে ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভূ-কম্প পরবর্তী পর্যায়ে নেপালেরপুনর্নির্মাণ ও পুনর্গঠন প্রচেষ্টায় সর্বতোভাবে সহায়তাদানে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত। কেরলের বিলিভার্স চার্চের মেট্রোপলিটন বিশপডঃ কে পি ইয়োহানান এক প্রতিনিধিদলকে সঙ্গে নিয়ে বৃহস্পতিবার দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। গঙ্গা পরিচ্ছন্নতা তথা দূষণমুক্তি অভিযানে ১ কোটি টাকা দান করেন বিশপ ইয়োহানান। ভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি ডঃএ.পি.জে আব্দুল কালাম-এর জন্মবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদনকরলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থাগুলির কোনও যৌথ উদ্যোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে ২০১২’র ফেব্রুয়ারি মাসে বিজ্ঞাপিত পৃথক ও নির্দিষ্ট রূপরেখা অনুসরণের কোনও প্রয়োজন হবে না। বুধবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে ঐ পৃথক রূপরেখা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। সুতরাং, অন্যান্য কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রক ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা দপ্তর সময়ে সময়ে যে রূপরেখা ও নিয়মাবলী প্রকাশ করে,তা এখন থেকে প্রযোজ্য হবে প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের নিয়ন্ত্রণাধীন সংস্থাগুলির ক্ষেত্রেও। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের বিভিন্ন সংস্থারআত্মনির্ভরতার পাশাপাশি, দেশীয় উৎপাদন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা পূরণও সম্ভব হবে। আগামীকাল, অর্থাৎ ১১ই আগস্ট, মুম্বাই সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী। আইআইটি বম্বের ৫৬তম বার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সমাবর্তন ভাষণ দেবেন তিনি। শুধু তাই নয়, এ সম্পর্কিত যাবতীয় খুঁটিনাটির অপব্যবহার ও নষ্ট হয়ে যাওয়ার হাত থেকেও বাঁচানো যাবে। ফলে সুরক্ষিত থাকবে নাগরিকদের গোপনীয়তার অধিকার। ডিএনএ নিয়ন্ত্রণ বিধি কার্যকর হলে একদিকে যেমন অপরাধমূলক ঘটনার বিচার প্রক্রিয়া দ্রুততার সঙ্গে সম্পূর্ণ হবে, অন্যদিকে তেমনই প্রকৃত অপরাধীদের আরও ভালোভাবে চিহ্নিত করা যাবে। অপরাধমূলক ঘটনার সূত্রে কোনও ব্যক্তি নিখোঁজ বা বেপাত্তা হয়ে গেলে তার সঙ্গে সনাক্তকরণ না হওয়া মৃতদেহের মিল বা অমিল আরও ভালোভাবে খুঁজে পাওয়াও সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (২ মার্চ) নতুন দিল্লিতে ইন্ডিয়া টুডে কনক্লেভে ভাষণ দেন। স্বচ্ছ ভারত মিশন সম্পর্কে ‘ইন্ডিয়া টুডে গ্রুপ’ সচেতন করার ব্যাপারে যে প্রয়াস নিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তাঁর মেয়াদকালের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, জাতীয় স্তরে তাঁর স্বল্প অভিজ্ঞতাই অভিশাপের পরিবর্তে আশীর্বাদ হয়ে উঠেছে। দেশের বৈদেশিক নীতি প্রসঙ্গে যে আশঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে সে সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত কয়েকদিনের ঘটনাসমূহ, এই নীতি নিয়ে যে সন্দেহ রয়েছে তা নিরসনে সাহায্য করবে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, আজকের ভারত এক নতুন ভারত এবং এক ভিন্ন ভারত। তিনি বলেন, প্রত্যেক সেনার জীবন অমূল্য এবং আজ ভারতের সঙ্গে কেউই বিশৃঙ্খলা তৈরির সাহস দেখাতে পারে না। জাতীয় স্বার্থে যে কোন সিদ্ধান্ত গ্রহণে তাঁর সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ বলেও শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের ভেতরে এবং বাইরে কিছু অশুভ শক্তি রয়েছে, যারা দেশের বিরুদ্ধে এবং ভারতের এই একতা দেখে ভীত। তিনি বলেন, এই ভীতি একদিকে দেশের পক্ষে ভালোই। ভারতের শৌর্য দেখে শত্রুরা ভীত, দুর্নীতি পরায়ণ ব্যক্তিরা আইনের কারণে ভীত, পক্ষান্তরে এই ভীতি মঙ্গলজনক। তিনি আরও বলেন, নতুন ভারত তার সক্ষমতা ও সম্পদ নিয়ে এগিয়ে চলেছে। সরকার এবং সশস্ত্র বাহিনীগুলির সদিচ্ছা নিয়ে যারা সন্দেহ প্রকাশ করে থাকেন, তাদের উদার মানসিকতার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী প্রশ্ন তোলেন। তাঁর অভিমত, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীগুলির প্রতি যারা সন্দেহ প্রকাশ করেন এবং যারা দেশে সন্ত্রাসে প্ররোচনা দেন, তাদেরকেই বিশ্বাস করেন। যাদের কিছু পদক্ষেপ জাতীয় নিরাপত্তায় বিরূপ প্রভাব ফেলেছে, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কড়া সমালোচনা করেন। রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি পূরণেই দান-খয়রাতি করা হয়েছে যাতে দরিদ্ররা দরিদ্রই থেকে যান এবং তাদের কাছে দয়ার পাত্র হয়ে থাকেন। এর সবথেকে উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হল কৃষি ঋণ মকুব। তাঁর সরকার যে ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’ চালু করেছে, তার উদ্দেশ্যই হল কৃষক সমাজের ক্ষমতায়ন। ঘোষণার ২৪ দিনের মধ্যেই এই প্রকল্প শুরু করা হয়েছে বলেও শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, তাঁর সরকারের ৫৫ মাস এবং অন্যান্যদের ৫৫ বছর প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দুই ভিন্নধর্মী প্রয়াসের প্রতিফলন ঘটায়। তিনি বলেন, ‘তাদের প্রয়াস ছিল প্রতীকি’, আর ‘আমাদের প্রয়াস সামগ্রিক’। এ প্রসঙ্গে তিনি সেনানীদের জন্য ‘এক পদ এক পেনশন’; ‘গরিব মানুষের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ’; পরিচ্ছন্ন রান্নার জ্বালানি ‘উজ্জ্বলা যোজনা’; ‘সকলের জন্য বিদ্যুৎ’ এবং ‘সকলের জন্য আবাসন’ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেন। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রগতির কথাও তিনি উল্লেখ করেন। কর্মপ্রয়াসের পাশাপাশি আইন বা উদ্যোগের যৌথ মেলবন্ধনে এগিয়ে যেতে তাঁর সরকার বিশ্বাসী। ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসের প্রশিক্ষনাধীন ৩৯ জন আধিকারিক সোমবার প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন। প্রশিক্ষণরত আধিকারিকদের প্রধানমন্ত্রী বিদেশে ভারতের সমৃদ্ধ ইতিহাস, সংস্কৃতি ও পরম্পরার বিষয়গুলি তুলে ধরার ওপর জোর দেন। কারণ, অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত তপশিলি জাতিভুক্ত সাধারণ মানুষের কল্যাণে বর্ধিত তহবিলের সাহায্যে আরও বেশি করে বিনিয়োগ সম্ভব হয়ে উঠবে। ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে সংস্থার লক্ষ্য হল ৬৩,০০০ তপশিলি জাতিভুক্ত মানুষকে বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা। উল্লেখ্য, দেশের ৩২টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৩৭টি এজেন্সি মারফৎ এন এস এফ ডি সি তাদের কর্মসূচিগুলি রূপায়িত করে। ২০১৪ ব্যাচের ১০০-রও বেশি ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিসের (আই পি এস) আধিকারিক-প্রশিক্ষার্থী আজ দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর ৭ নম্বর রেস কোর্স রোডের বাসভবনে। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শ্রী অজিত দোভাল-ও সাক্ষাতের সময় উপস্থিত ছিলেন। ইরান ইসলামিক সাধারণতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট মাননীয় ডঃ হাসান রৌহানি, আফগানিস্তান ইসলামিক সাধারণতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট মাননীয় ডঃ আশরফ ঘনি, মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়গণ, পারস্যের প্রখ্যাত কবি হাফেজ একদা বলেছিলেন : আজ আমরা সকলেই এক ইতিহাস সৃষ্টির ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী। আজ আমরা সেটাই সফল করতে পেরেছি। এই ধরনের একটি অসাধারণ মুহূর্তের আয়োজন করার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ মাননীয় রৌহানির কাছে। মাননীয় প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘনি, ধন্যবাদ জানাই আপনাকেওআপনার উজ্জ্বল উপস্থিতির জন্য। আজকের এই ঘটনা বিশেষ তাৎপর্যময়। তাই, এখানে উপস্থিত থাকার এই বিরল সুযোগকে আমরা সকলেই উপভোগ করছি। কিছুক্ষণ আগেই মাননীয় রৌহানি এবং প্রেসিডেন্ট ঘনির সঙ্গে আমি বেশ কয়েকটি বিষয় নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেছি। অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টি স্পষ্টতই আমাদের কাছে এক বিশেষ অগ্রাধিকারদাবি করে। আমাদের পরস্পরের উদ্দেশ্য এক, তাই আমরা ঐক্যবদ্ধ। শান্তি ও সমৃদ্ধির নতুন নতুন পথ অন্বেষণ আমাদের একটি সাধারণ লক্ষ্য। সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে আমরা যোগসূত্র স্থাপন করতে আগ্রহী। কিন্তু সেইসঙ্গে, আমাদের নিজেদের মধ্যেও উন্নততর যোগাযোগ গড়ে তোলার বিষয়টি আমাদের অগ্রাধিকারের সূচিতেই পড়ে। তাই, সমগ্র অঞ্চলেরই এ এক নতুন ঊষার অভ্যুদয়। আমাদের পারস্পরিক সুপ্রাচীন সম্পর্কের গভীরতা ও বাস্তবতা সম্পর্কে ইরান, আফগানিস্তান ও ভারত বিশেষভাবে ওয়াকিবহাল। বহু শতক ধরে শিল্পকলা ও সংস্কৃতি, জ্ঞান ও মননশীলতা এবং ভাষা ও ঐতিহ্য আমাদের মধ্যে এক সাধারণ যোগসূত্র গড়ে তুলেছে। এমনকি, ঐতিহাসিক দুর্দিনের মুহূর্তেও আমরা কখনই একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন হইনি। আজ আমরা এখানে সমবেত হয়েছি আমাদের এই অটুট বন্ধনের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা উপলক্ষে। এই করিডরের মধ্য দিয়ে সমগ্র অঞ্চলের মধ্যে বাণিজ্যিক আদানপ্রদানে আর কোনরকম বাধা থাকবে না। করিডরের মূল পথটি সম্প্রসারিত হবে ইরানের চাবাহার বন্দরের মধ্য দিয়ে। ওমান উপসাগর অঞ্চলের এই বিশেষ অবস্থানকেন্দ্রটি কৌশলগত দিক থেকে খুবই তাৎপর্যময়। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে এই পথটিকে নিশ্চিত ও কার্যকরভাবে ব্যবহার করতে পারবে আফগানিস্তান। শুধু তাই নয়, সম্পাদিত এই চুক্তির অর্থনৈতিক সুফল আমাদের এই তিনটি দেশ ছাড়িয়েও প্রসারিত হবে মধ্যপ্রাচ্যের বিস্তীর্ণ অঞ্চলে। এটাই আমাদের লক্ষ্য এবং তা সম্ভব করে তুলতে আমরা যথেষ্ট উপযুক্ত বলেই আমি মনে করি। বিভিন্ন মৌলিক ক্ষেত্রে আমাদের চারপাশের বিশ্ব জগৎ ক্রমশ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমাদের জাতীয় সমৃদ্ধির সীমাবদ্ধতার জন্য উপযুক্ত যোগাযোগ ব্যবস্থার অভাবই একমাত্র কারণ নয়। বিশ্ব অর্থনীতি এখনও সম্পূর্ণভাবে অনিশ্চয়তা ও দুর্বলতা কাটিয়ে উঠতে পারেনি। চরমপন্থী মতাদর্শ এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ যেভাবে থাবা বিস্তার করছে, তাতে আমাদের বর্তমান অগ্রগতি এবং ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি এক বিশেষ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের তিনটি দেশেরই রয়েছে আমাদের সবচেয়ে মূল্যবান সম্পদ – তরুণ ও যুবসমাজ। এই তিনটি দেশের জনসংখ্যার ৬০ শতাংশেরও বেশি অনূর্ধ ৩০ বছরের তরুণ নাগরিক। জাতীয় এবং আঞ্চলিক উন্নয়নের লক্ষ্যে তাঁরা আমাদের বিশেষ সম্পদ। এর মূল সাফল্যই প্রতিফলিত হবে সমগ্র অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার এক ইতিবাচক বাতাবরণ সৃষ্টির মাধ্যমে। এক বৃহত্তর সংযোগ তথা যোগাযোগের সেতুবন্ধনগড়ে তোলার লক্ষ্যে এই বাণিজ্যিক ট্র্যানজিট করিডরটি যে একটি সূচনামাত্র একথা আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। আমার চিন্তাভাবনায় ইরান, আফগানিস্তান ও ভারতের মধ্যে বৃহত্তর সংযোগের সেতুবন্ধনটি বিস্তৃত হবে : · সংস্কৃতি থেকে বাণিজ্য · ঐতিহ্য থেকে প্রযুক্তি · বিনিয়োগ থেকে তথ্যপ্রযুক্তি · জনসাধারণ থেকে রাজনীতি পর্যন্ত। অন্যভাবে বলতে গেলে, এটি হল একটি সঙ্কল্প যার মধ্য দিয়ে : · বাস্তবায়িত হবে উন্নততর যোগাযোগ · স্থাপিত হবে শান্তি ও স্থিতিশীলতার এক বাতাবরণ · গড়ে উঠবে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও নতুন বাণিজ্যিক তৎপরতা · যাবতীয় বাধাবিপত্তি দূর করে বিভিন্ন জাতির মধ্যে গড়ে উঠবে ঘনিষ্ঠ এক প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্ক। আমাদের এই প্রচেষ্টার সাক্ষী থাকবে ইতিহাস যানীরবে সমর্থন যোগাবে আমাদের এই উন্নয়নের সঙ্কল্পকে। এই প্রচেষ্টায় নেতৃত্বদানের জন্যআমি বিশেষভাবে প্রশংসা করিমাননীয় রৌহানি এবং মাননীয়ঘনির। আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। অনেক অনেক ধন্যবাদ। মধ্যপ্রদেশ, রাজস্থান, মণিপুর-সহ দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অসময়ের ঝড়বৃষ্টিতে জীবনহানির ঘটনা ঘটায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “সরকার ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সহায়তা দেওয়ার জন্য প্রচেষ্টা চালাচ্ছে। পরিস্থিতির ওপর নজর রাখা হচ্ছে”। “@বিএসএফ ইন্ডিয়া’র প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বাহিনীর কর্মী এবং তাঁদের পরিবার-পরিজনদের অভিনন্দন জানাই। জাতির সেবায় সীমান্ত রক্ষী বাহিনী সাহসিকতার মধ্য দিয়ে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। সীমান্ত প্রহরার কাজে কিংবা দুর্ঘটনা ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মুহূর্তেও প্রতিকূলতার হাত থেকে তারা আমাদের রক্ষাকর্তা। কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ওপরিবার কল্যাণ মন্ত্রক, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার আঞ্চলিক অফিসএবং স্টপ টিবি পার্টনারশিপ সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে এই শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করাহয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই উপলক্ষে যক্ষ্মা মুক্ত ভারতের প্রচার কর্মসূচির সূচনাকরবেন। এই কর্মসূচিতে দেশ থেকে যক্ষ্মা রোগকে নির্মূল করার লক্ষ্যে জাতীয় কৌশলগতপরিকল্পনার রূপায়ণের কাজকে মিশন ধাঁচে উন্নীত করে কাজ চালানো হবে। নতুন জাতীয় কর্মপরিকল্পনায় সমস্ত যক্ষ্মা রোগীকেচিহ্নিত করা এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে যাঁরা এই রোগের চিকিৎসা করাচ্ছেন, তাঁদের কাছেপৌঁছানো ও উচ্চ ঝুঁকির জনসংখ্যার মধ্যে যেসব রোগীর রোগ নির্ণয় হয়নি তাঁদের চিহ্নিতকরে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণের কথা বলা হয়েছে। প্রস্তাবিত বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন পর্ষদ গঠিত না হওয়া পর্যন্ত অন্য একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় ঐ কাজকর্ম দেখভাল করবে। ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ৬ থেকে ৮ এপ্রিল, ২০১৮ পর্যন্ত ভারতসফর করছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী মিঃ কে পি শর্মা ওলি। ৭এপ্রিল দুই প্রধানমন্ত্রী মিলিতভাবে ভারত ও নেপাল – এই দুটি দেশের বহুধা প্রসারিতসম্পর্কের বিষয়টি নিয়ে এক পর্যালোচনা বৈঠকে মিলিত হন। দু’দেশের সরকার ও জনসাধারণ পর্যায়েএবং বেসরকারি ক্ষেত্রগুলির ক্রমপ্রসারমান সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের সম্পর্ককেতাঁরা উভয়েই আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান। সমতা এবং পারস্পরিক আস্থা, সম্মান ও কল্যাণেরভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে একযোগে কাজ করে যাওয়ারলক্ষ্যে তাঁরা সঙ্কল্পবদ্ধ হন। ভারতও নেপালের এই নিবিড় মৈত্রী সম্পর্ক যে দু’দেশের সাধারণ ঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিকযোগাযোগ তথা নাগরিকদের মধ্যে পারস্পরিক নিবিড় সম্পর্কের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে,সেকথার উল্লেখ করে দুই প্রধানমন্ত্রীই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও মজবুত করে তুলতেনিয়মিতভাবে উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সফর বিনিময় কর্মসূচির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপকরেন। প্রধানমন্ত্রীওলি বলেন যে তাঁর সরকার ভারতের সঙ্গে মৈত্রী সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলারবিষয়টিকে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে নেপাল এমনভাবেএগিয়ে নিয়ে যেতে আগ্রহী যাতে ভারতের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি এবং সেইসঙ্গে অর্থনৈতিকরূপান্তর প্রচেষ্টা ও উন্নয়ন থেকে ঐ দেশ লাভবান হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমোদী, মিঃ কে পি শর্মা ওলিকে আশ্বাস দিয়ে বলেন যে তাঁর দেশের চাহিদা ওঅগ্রাধিকারের ভিত্তিতেই নেপালের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে জোরদার করে তুলতেভারত বরাবরই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। নেপালেরবীরগঞ্জে এক বিশেষ চেকপোস্ট ব্যবস্থার এদিন সূচনা করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। কুফিক লিপিতে রচিত এই পাণ্ডুলিপিটি ভারতের সংস্কৃতি মন্ত্রকের রামপুর রাজা লাইব্রেরির একটি মূল্যবান সংগ্রহ ও সম্পদ। মনিপুরের মাননীয় রাজ্যপাল ডঃ নাজমা হেপতুল্লা এঁরা প্রত্যেকেই ভারতীয় বিজ্ঞান এবং শিক্ষারক্ষেত্রে অসাধারণ অবদান রেখে গেছেন । আসুন, আমরা সম্প্রতি প্রয়াত বিশ্বের অন্যতম শ্রেষ্ঠপদার্থবিজ্ঞানী এবং আধুনিক জ্যোর্তিবিজ্ঞানের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র স্টিফেনহকিং-এর প্রতি বিশ্বের সবার সঙ্গে একযোগে শোক ব্যক্ত করি । তিনি ছিলেন ভারতের এক বিশিষ্ট বন্ধু এবং দু ’ বার আমাদের দেশে সফরকরে গেছেন । সাধারন মানুষ হকিং-এর নাম যে কেবলমাত্র কৃষ্ণগহ্বরনিয়ে তাঁর কাজের জন্যই জানেন তাই নয়, বরং সমস্ত প্রতিকূলতার বিরুদ্ধে তাঁর অদম্যমনোবলের জন্য তিনি বিশেষভাবে পরিচিত ছিলেন । তাঁকে বিশ্বেরঅন্যতম শ্রেষ্ঠ অনুপ্রেরণাদাতা হিসেবে মানুষ মনে রাখবে । আমি আজ ইম্ফলে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের একশো পাঁচতম অধিবেশনেউপস্হিত থাকতে পেরে অত্যন্ত আনন্দিত । যাঁদের কাজভবিষ্যতের পথকে সুগম করে সেইসব বিজ্ঞানীদের পাশে থাকতে পেরে আমি খুব আনন্দিত বোধকরছি । মনিপুর বিশ্ববিদ্যালয় যেভাবে এই গুরুত্বপূর্ণকর্মকান্ডের আয়োজন করেছে, তা দেখে আমি খুব খুশি । এই বিশ্ববিদ্যালয় উত্তর পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির মধ্যে উচ্চশিক্ষার একগুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে উঠে এসেছে । আমি শুনলাম বিগত১০০ বছরেরও বেশি সময়ের মধ্যে এই নিয়ে দ্বিতীয়বার উঃ পূর্বাঞ্চলে ভারতীয় বিজ্ঞানকংগ্রেসের আয়োজন করা হয়েছে । উঃ পূর্বাঞ্চলেরক্রমবর্ধমান ইচ্ছাশক্তির প্রমান এই অনুষ্ঠান । এতে ভবিষ্যতের পক্ষে খুব ভালো হবে । আবহমানকাল ধরেই বিজ্ঞান প্রগতি এবং সমৃদ্ধির সঙ্গে জুড়ে আছে । বিজ্ঞান হচ্ছে মানবকল্যাণের এক উপায়- মানুষেরজীবনের রূপান্তরের এবং মানবকল্যাণ ও বিকাশকে এগিয়ে নিয়ে চলার এক পদ্ধতি । আমি আজ দাঁড়িয়ে আছি মনিপুরের সেই দুর্জয় সাহসের ভূমিতে, যেখানে১৯৪৪ সালের এপ্রিল মাসে নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস – এর আজাদ হিন্দবাহিনী স্বাধীনতার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিল । আমি নিশ্চিত যেআপনারা যখন মনিপুর ছেড়ে যাবেন, তখন আমাদের জাতির জন্য দীর্ঘস্হায়ী কোনো কাজ করারঅনুরূপ ইচ্ছাশক্তি নিয়ে যাবেন । আমি এটাওনিশ্চিতভাবে বলতে পারি যে আপনারা আজ এখানে মিলিত বিজ্ঞানীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবেযোগাযোগ রেখে নিজেদের কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারবেন । সত্তি কথা বলতে কি বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের বৃহত সমস্যাসমাধানের জন্যও বিভিন্ন ক্ষেত্রে যুক্ত বিজ্ঞানীদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সহযোগীতা ওসমন্বয়ের প্রয়োজন । কেন্দ্রীয় সরকারের বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে উঃপূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জন্য বেশ কয়েকটি নতুন কর্মসূচী শুর করেছেন । আমরা বর্তমানে এই পরিষেবাকে উঃ পূর্বাঞ্চলের সবকটি জেলাতে ছড়িয়ে দেওয়ারলক্ষ্যে কাজ করছি । উঃ পূর্বাঞ্চলের জন্য বিশেষভাবে প্রাসঙ্গিকবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সহায়তা দিতে বেশ কয়েকটি নতুন কেন্দ্র এখানে গড়ে তোলা হয়েছে । মনিপুরে বিভিন্ন জনগোষ্ঠী কর্তৃক ব্যবহৃত প্রাচীন ও চিরাচরিত ওষুধপত্র বিষয়েগবেষনাকেন্দ্র গড়ে তোলা হয়েছে । এই গবেষনাকেন্দ্রটিতে উঃ পূর্বাঞ্চলের বিভিন্নরাজ্যে প্রাপ্ত সুগন্ধী এবং ঔষধি গাছগাছড়া নিয়ে গবেষনা চালানো হবে । সাতটি উঃ পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যের প্রত্যেকটিতেই একটি করে রাজ্যজলবায়ু পরিবর্তন কেন্দ্র স্হাপন করা হয়েছে । এইসব কেন্দ্রগুলিথেকে জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ে মানুষের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলা এবং এ বিষয়ে ঝুঁকিরবিশ্লেষন ও গবেষনা চালানো হবে । আমরা ‘ বাঁশ ’ -কে গাছের প্রজাতিহিসাবে পরিচিতি থেকে মুক্তি দিয়েছি এবং বিজ্ঞানভিত্তিকভাবে বাঁশকে ‘ ঘাস ’ হিসাবে শ্রেণিবদ্ধকরা হয়েছে । এর জন্য আমাদের একটি পুরোনো আইন পরিবর্তন করতেহয়েছে । আইনের এই সংশোধনের ফলে বাঁশ কাটা ও তার অবাধ চলাচলসম্ভব হবে । এছাড়া উৎপাদন এবং এই বস্তুটির গ্রাহককেন্দ্রগুলির মধ্যেও সমন্বয়সাধন সম্ভব হবে । কৃষকরা বাঁশেরসরবরাহ শৃঙ্খলে সম্ভাবনা বুঝে কাজ করতে পারবেন । সরকার ‘ জাতীয় বাঁশ অভিযান ’ -কে ১২০০ কোটি টাকার বরাদ্দে পুনরুজ্জীবিত করেতোলার উদ্যোগ নিয়েছেন । মনিপুরের মতো রাজ্যগুলি এই সিদ্ধান্তের ফলে উপকৃতহবে । ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে । আচার্য জগদীশচন্দ্র বোস, সি.ভি.রমন, মেঘনাদ সাহা এবং সত্যেন্দ্রনাথ বোসের মতোভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ বিজ্ঞানীরা এই সংগঠনের নেতৃত্ব দিয়েছেন । এইসব মহান বিজ্ঞানীদের প্রতিষ্ঠিত বিজ্ঞান গবেষনার ধারার উচ্চমান থেকে নতুনভারতকে অনুপ্রেরণা খুঁজে নিতে হবে । বিজ্ঞানীদের সঙ্গেবিভিন্ন অনুষ্ঠানে মত বিনিময়ের সময় আমি আমাদের দেশের বিজ্ঞানীদের দেশেরআর্থসামাজিক সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করার পরামর্শ দিয়েছি । সমাজের দরিদ্র এবং বঞ্চিত শ্রেণির মানুষের সুবিধার জন্য নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহনকরে কাজ করার জন্য আহ্বান জানিয়েছি । তাঁর উদ্ভাবিত পদ্ধতিতে প্লাস্টিক বর্জ্য পুর্নব্যবহার করে নির্মত রাস্তাগুলিজলে নষ্ট হয় না, অনেক বেশি ভার বহন করতে পারে এবং দীর্ঘস্হায়ী হয় । একইসঙ্গে তিনি প্লাস্টিক বর্জ্যের পুর্নব্যবহারের অন্য গঠনমূলক পদ্ধতিওউদ্ভাবন করেছেন । চিন্তাকিন্ডি মাল্লেশম নামে ২০১৭-র আরেক পদ্মশ্রীপ্রাপক বিজ্ঞানী এমন এক বুননযন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন যা ব্যবহার করে তাঁতিদের শাড়ি বোনার জন্য সময় এবং শ্রমবহুলাংশে লাঘব হয়েছে । বিজ্ঞান কংগ্রেসের অধিবেশনের মূল সুরটিও বেশ কিছু প্রশ্নের জন্মদেয় । আমরা কি ভারতের ছেলেমেয়েদের যথাযথভাবে বিজ্ঞানেরসঙ্গে পরিচয় করানোর জন্য পর্যাপ্ত কাজ করেছি ? আমরা কিতাদের মধ্য সুপ্ত প্রতিভার জাগরন ঘটাতে উপযুক্ত পরিবেশ তৈরি করে দিতে পেরেছি ? বিজ্ঞানের ক্ষেত্রেআমাদের অগ্রগতিকে সমাজের সঙ্গে সক্রিয়ভাবে যুক্ত করার প্রয়োজন রয়েছে । আমাদের জাতীয় প্রতিষ্ঠানএবং গবেষনাগারগুলিকে আমাদের ছেলেমেয়েদের জন্য খুলে দিতে হবে । আমি, স্কুলেরছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বিজ্ঞানীদের পারস্পরিক মতবিনিময়ের একটি উপযুক্তপ্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্হা গড়ে তোলার জন্য বিজ্ঞানীদের কাছে আবেদন জানাই । আমি তাঁদের প্রত্যেককেপ্রতি বছর ১০০ ঘন্টা সময় দশম থেকে দ্বাদশ শ্রেণীর ১০০ জন ছাত্রছাত্রীর সঙ্গেবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিষয়ে আলোচনা করার আহ্বান জানাই । ভারত বহুরাষ্ট্রিক আন্তর্জাতিক সৌরজোটের এবং উদ্ভাবনঅভিযানের নেতৃস্হানীয় দেশ । এই জোটগুলি পরিচ্ছন্ন শক্তির জন্য গবেষনা ও উন্নয়নের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে থাকে । আমাদের পরমানুশক্তি দপ্তরদেশে দশটি নতুন ৭০০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন চাপযুক্ত ভারী জল চালিত বিদ্যুতচুল্লিস্হাপনের উদ্যোগ নিয়েছে । অভ্যন্তরীন পারমানবিক শিল্পে এই সিদ্ধান্ত গতি আনবে । এছাড়া পারমানবিক সরঞ্জাম নির্মানেরক্ষেত্রে এই ধরনের সিদ্ধান্ত ভারতের পরিচিতিকে আরও জোরালো করবে । আমরা, ভারত থেকে যক্ষ্মারোগ নির্মূল করার লক্ষ্যে সমন্বিত প্রয়াসগ্রহন করেছি । ভারতীয় বৈজ্ঞানিকদের কঠোর শ্রম ও নিষ্ঠার ফলেই এই সাফল্য সম্ভব হয়েছে । চন্দ্রযান-১ কর্মসূচীর সাফল্যের পর আমরা আগামী কয়েকমাসের মধ্যেইদ্বিতীয় চন্দ্রযান কর্মসূচীর সূচনা করতে চলেছি । সম্পূর্ণ দেশজ উদ্যোগে নির্মিত এই কর্মসূচীর মধ্যে চাঁদের মাটিতে একটিরোভারের অবতরণ এবং চলাচল করার কথা রয়েছে । গত শতাব্দীর মহানবিজ্ঞানী আলবার্ট আইনস্টাইন ‘ গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভস্ ’ বা মহাকর্ষ তরঙ্গের যে তত্ত্ব আবিষ্কার করেছিলেন তা প্রমাণ করার আন্তর্জাতিকউদ্যোগে ৯টি ভারতীয় সংস্হার ৩৭ জন বিজ্ঞানী যেভাবে অংশ নিয়েছেন তা অত্যন্ত গর্বেরবিষয় । ইন্টারন্যাশনাল লেসার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরি(লিগো)-তে বিশ্বের বিজ্ঞানীদের সম্মিলিত উদ্যোগে ৩ বছর আগে এই তত্ত্ব সত্যপ্রমানিত হয়েছে । আমাদের সরকার ইতিমধ্যেই দেশে তৃতীয় লিগো ডিটেক্টর স্হাপনের প্রস্তাব অনুমোদনকরেছে । এর ফলে লেসার, আলোকতরঙ্গ এবং কম্পিউটিং-এর মতো মৌল বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আমাদেরজ্ঞানের পরিধি প্রসারিত হবে । আমাকে জানানো হয়েছে যে আমাদের বিজ্ঞানীরা এই প্রকল্পটি বাস্তবায়নের লক্ষ্যেঅক্লান্ত পরিশ্রম করে চলেছেন । আমি গুরুত্বপূর্ণ বৈজ্ঞানিক সংস্হার কাছাকাছি শহরগুলিতে বিজ্ঞীন গবেষনারএকগুচ্ছ কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাব করেছি । এর লক্ষ্য হচ্ছে শহরভিত্তিক গবেষনা ও উন্নয়নেরক্লাস্টার তৈরি করে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকর সমস্ত অংশীদার যেমন শিক্ষা ও গবেষনাপ্রতিষ্ঠান থেকে শিল্প ও স্টার্ট আপ সহ সংশ্লিষ্ট সকলকে এক জায়গায় নিয়ে আসা । এর ফলে নতুন আবিষ্কারযেমন উ ৎ সাহিত হবে, একইসঙ্গে বিশ্বমানের সমতুল গবেষনা হাবওগড়ে উঠবে । আমরা সম্প্রতি ‘ প্রধানমন্ত্রী গবেষনা ফেলো ’ নামে একটি নতুন প্রকল্প অনুমোদন করেছি । এই কর্মসূচির আওতায় দেশেরশ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলি যেমন- আই.আই.এস.সি., আই.আই.টি, এন.আই.টি, আই.আই.এস.ই.আরএবং আই.আই.আই.টি-র মতো প্রতিষ্ঠানের শ্রেষ্ঠ ছাত্রছাত্রীরা আই.আই.টি এবংআই.আই.এস.সি-তে পিএইচডি কর্মসূচীতে সরাসরি ভর্তি হতে পারবেন । এই কর্মসূচী আমাদের দেশথেকে মগজচালান বন্ধে সহায়ক হবে । এছাড়া অত্যাধুনিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দেশজ গবেষনা উ ৎ সাহিত হবে । আমরা ভারতকে পরিচ্ছন্ন,সবুজ এবং সমৃদ্ধ করে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি চাই । আমি বিজ্ঞানীদের কাছেথেকে আমার চাহিদা বিষয়ে আরও একবার জানাতে চাই । আমাদের উপজাতীয় জনসংখ্যারএক বড়ো অংশ সিকল সেল অ্যানিমিয়ার মতো রোগে ভোগেন । আমাদের বিজ্ঞানীরা কীঅদূর ভবিষ্যতে এই সমস্যার সহজ এবং সুলভ সমাধান বের করতে পারেন ? আমাদের শিশুদের এক বিরাটঅংশ অপুষ্টি জনিত সমস্যায় ভোগে । এই সমস্যা মোকাবিলায় জাতীয় পুষ্টি মিশন নামে এক কর্মসূচি রূপায়ণ শুরু করেছে । এই মিশনের লক্ষ্যপূরণেআপনারা বিজ্ঞানীরা কিছু প্রস্তাব এবং সমাধান দিতে পারেন ? ভারতে কোটি কোটি নতুন বাড়ির প্রয়োজন । আমরা ২০২২ সালের মধ্যে ১০০ গিগাওয়াটসৌরবিদ্যু ৎ উ ৎ পাদনের ব্যবস্হা গ্রহণ করার লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছি । বর্তমানে প্রচলিত এবংবাজার থেকে প্রাপ্ত সৌর মডিউলের কর্মদক্ষতা মাত্র ১৭ থেকে ১৮ % আমাদের বিজ্ঞানীরা কী আরওদক্ষতা সম্পন্ন সৌর মডিউল নির্মাণের চ্যালেঞ্জ গ্রহন করতে পারেন যা ভারতে তৈরি হবেএকই খরচায় । এই কাজ করা সম্ভব হলে কি বিরাট পরিমান সম্পদ সাশ্রয় করা যাবে ভেবে দেখুন । ভারতীয় মহাকাশ গবেষনাসংস্হা মহাকাশে উপগ্রহ পরিচালনার জন্য অন্যতম সেরা ক্যাটারি সিস্টেম ব্যবহার করে । অন্যান্য সংস্হগুলি ইসরোরসঙ্গে জোট বেঁধে সুলভ এবং দক্ষ ব্যাটারি ব্যবস্হা নির্মাণ করতে পারে যা মোবাইল ফোনকিংবা বিদ্যু ৎ চালিত গাড়িতে ব্যবহার করাসম্ভব হবে । আমাদের ম্যালেরিয়া এবং জাপানি এনসেফ্যালাইটিসেরমতো নীরব ঘাতক রোগ থেকে মুক্তি পেতে নতুন চিকি ৎ সা পদ্ধতি, ওধুষপত্র এবং ভ্যাকসিন প্রয়োজন । যোগা, খেলাধুলা এবংচিরাচরিত জ্ঞান নিয়েও আমাদের গবেষনা চালানো দরকার । ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পইউনিটগুলি আমাদের দেশের কর্মসংস্হানের এক প্রধান উ ৎ স । বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার মুখে তাদের সহায়তা করতে আমাদের বিজ্ঞান এবংপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলি কী এগিয়ে আসতে পারে ? ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পক্ষেত্রে কাজের পদ্ধতি এবংতাদের উ ৎ পাদিত পণ্যদ্রব্যেরউন্নয়নের জন্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কী কাজে লাগানো সম্ভব । প্রযুক্তি, শিক্ষা,স্বাস্হ্য পরিষেবা এবং ব্যাঙ্কি-এর মতো প্রতিষ্ঠানগুলিকে আরও বেশি করে মানুষেরকাছে নিয়ে আসতে পারে । এখন থেকে চার বছর পর, আমরা আমাদেরস্বাধীনতার ৭৫ তম বর্ষ উদযাপন করবো । এই লক্ষ্য অর্জন করতে হলে, আপনাদের সকলের আন্তরিক অবদান প্রয়োজন । ভারতীয় অর্থনীতি বর্তমানে উচ্চ বৃদ্ধিররেখায় রয়েছেন । কিন্তু আমরা মানব উন্নয়নসূচক-এ পিছিয়ে আছি । এই বৈষম্যের অন্যতমগুরুত্বপূর্ণ কারণ হচ্ছে, বিভিন্ন রাজ্যের অভ্যন্তরে এবং রাজ্যগুলির মধ্যে বৈষম্য । এই বৈষম্য দূরীকরণেরলক্ষ্যে আমরা, ১০০টির বেশি উন্নয়নকামী জেলার কাজের অগ্রগতির জন্য সমন্বিত উদ্যোগ গ্রহনকরেছি । আমরা স্বাস্হ্য ও পুষ্টি, শিক্ষা, কৃষি এবং জলসম্পদ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি,দক্ষতা বিকাশ ও বুনিয়াদি পরিকাঠামোর ওপর জোর দেব । এই সবকটি ক্ষেত্রেইআপনাদের উদ্ভাবনী সমাধান প্রয়োজন, যে সমাধানের মধ্যে স্হানীয় চ্যালেঞ্জ ওচাহাদিপূরণের বিষয়টি থাকবে । ‘ সবার জন্য এক সাইজ ’ -এর ধারনা এক্ষেত্রে কাজ করবে না । আমাদের বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানগুলি কি এইসব উন্নয়নকামী জেলাগুলির জন্য কাজ করতেপারে ? তারা কি এমন কোনো উপযুক্ত প্রযুক্তিতৈরি করে দক্ষতা ও উদ্যোগ বৃদ্ধিতে সাহায্য করতে পারে ? এই কাজ হবে, ভারতমাতার জন্য এক মহান সেবা । ভারতের আবিষ্কার ওবিজ্ঞান প্রযুক্তি ব্যবহারের এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য ও দীর্ঘ ইতিহাস রয়েছে । এই ক্ষেত্রে বিশ্বেরপ্রথম সারির দেশগুলির মধ্যে আমাদের নিজস্ব স্হান পুর্নদখল নেবার সময় এসেছে । আমি আমাদের বৈজ্ঞানিকগোষ্ঠীর কাছে, তাঁদের গবেষণাকে গবেষনাগার থেকে বাস্তবের ভূমিতে নিয়ে যাওয়ার আহ্বানজানাই । আমি নিশ্চিত যে, আমাদের বিজ্ঞানীদের নিষ্ঠা ও উদ্যোগের মাধ্যমে, আমরা একসুন্দর ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যেতে পারবো । এছাড়া, এই বিলটি মানুষের জীবন, গবাদিপশু ও সম্পত্তি সুরক্ষার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এছাড়াও, দেশের বাঁধগুলির নিরাপত্তা সংক্রান্ত নীতি-নির্ধারণ ও প্রয়োজনীয় সুপারিশ করার জন্য বাঁধ নিরাপত্তা সংক্রান্ত একটি জাতীয় কমিটি গঠনের কথাও এতে বলা হয়েছে। দেশের বাঁধগুলির নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে নীতি, নীতি-নির্দেশিকা এবং উচ্চমান ধরে রাখতে একটি জাতীয় বাঁধ নিরাপত্তা কর্তৃপক্ষ নামে নিয়ন্ত্রণকারী সংস্থা গড়ে তোলার সংস্থানও এই বিলে রয়েছে। ভারতহল ১৯১৯ সালে স্হাপিত আন্তর্জাতিক শ্রম সংগঠন (আইএলও)-এরপ্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেশ। আইএলও-এর কর্মপন্হারপ্রধান অবলম্বন হল কনভেনশন আকারে শ্রম বিষয়ে আন্তর্জাতিক আদর্শ মান গড়ে তোলা এবংসুপারিশ করা। এ পর্যন্ত ভারত ৪৫টি কনভেনশন অনুমোদন করেছে যার মধ্যে ৪২টি বলবৎরয়েছে। আজ সারা বিশ্ব জুড়ে খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের মানুষ ইস্টার পালন করছেন। আমি সবাইকে ইস্টারের অনেক শুভকামনা জানাই। আমার যুবা বন্ধুরা, আপনারা সবাই এখন পরীক্ষায় ব্যস্ত। কিছু লোকের হয়তো পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। আর কিছু লোকের মধ্যে টানাপোড়েন চলছে – কারণ একদিকে পরীক্ষা, অন্যদিকে টি-২০ ক্রিকেট ওয়ার্ল্ড কাপ। আজও হয়ত আপনারা ভারত আর অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে ম্যাচের জন্য অপেক্ষা করছেন। এর আগে ভারত পাকিস্তান আর বাংলাদেশের বিরুদ্ধে খেলায় অসাধারণ ভাবে জয়ী হয়েছে। ১৯৫১, ১৯৬২-র এশিয়ান গেমসে ভারত স্বর্ণপদক জয়ী হয়েছিল আর ১৯৫৬-র অলিম্পিক গেমসে ভারত চতুর্থ স্থান অধিকার করেছিল। কিন্তু দুর্ভাগ্য – গত কয়েক দশকে আমরা ক্রমাগত নিম্নস্থান পেয়ে আসছি – হেরে যাচ্ছি – পিছু হটছি – পিছিয়ে যাচ্ছি – পিছিয়েই যাচ্ছি। এখন তো ফিফাতে আমাদের স্থান এত নীচে নেমে গেছে যে কোনও কথা বলার সাহসই আমরা করতে পারি না। অন্য দিকে আমি দেখছি যে বর্তমানে ভারতের যুব প্রজন্মের ফুটবলের প্রতি আগ্রহ বেড়ে চলেছে। ই-পি-এল হোক, স্প্যানিশ লীগ হোক বা ইণ্ডিয়ান সুপার লীগ-এর খেলা হোক, আমাদের দেশের যুব প্রজন্ম এই বিষয়ে খবরাখবর পাওয়ার জন্য, টিভিতে খেলা দেখার জন্য সময় বার করে নেয়। এই কথা বলার তাৎপর্য এই যে, খেলার প্রতি আগ্রহ তো বাড়ছে। কিন্তু এত বড় সুযোগ যখন ভারতের সামনে এসেছে, তখন আমরা শুধু আয়োজন করেই আমাদের দায়িত্ব শেষ করব? এই পুরো বছর জুড়ে আমরা এক ফুটবল-ফুটবল পরিবেশ তৈরি করে তুলতে পারি। ক্রিকেটে আমরা এই সবকিছু দেখতে পাই, কিন্তু অন্যান্য খেলার ক্ষেত্রেও এই জিনিসগুলি আনতে হবে। আপনারা কি আমাকে এই ব্যাপারে পরামর্শ দিতে পারেন? বিশ্বের সামনে ভারতের সম্মান বাড়ানোর এ এক মস্ত বড় অবসর বলে আমার মনে হয়। ভারতের যুবশক্তিকে বিশ্বের কাছে পরিচিত করার এ এক সুযোগ বলে আমার মনে হয়। ম্যাচের সময় কি পেলাম, কি হারালাম এই অর্থে নয় – এই আয়োজন করার মাধ্যমে আমাদের নিজস্ব ক্ষমতাকে ঐক্যবদ্ধ করতে পারি, শক্তি প্রদর্শন করতে পারি, আর ভারতের ‘ব্র্যান্ডিং’-ও করতে পারি। আপনারা কি নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ-এ আপনাদের পরামর্শ পাঠাতে পারেন? আমার প্রিয় বিদ্যার্থীরা, ছুটির সময় কোথায় বেড়াতে যাবেন তা নিয়ে নিশ্চয়ই ভাবনা-চিন্তা করেছেন। খুব কম মানুষই আছেন, যাঁরা বিদেশ যান, বেশির ভাগ মানুষই নিজের নিজের রাজ্যে কোথাও না কোথাও ৫ দিন – ৭ দিনের জন্য বেড়াতে যান। কিছু মানুষ রাজ্যের বাইরেও যান। আগের বারেও আমি আপনাদের বলেছিলাম, আপনারা যেখানেই যান না কেন, সেখান থেকে ফোটো আপলোড করুন। আর আমি দেখেছি যে, যে কাজ পর্যটন দপ্তর, সংস্কৃতি দপ্তর, রাজ্য সরকার ও ভারত সরকার করতে পারে নি, সেই কাজ দেশের এই রকম কোটি কোটি পর্যটক করে দিয়েছেন। এমন এমন জায়গার ফোটো আপলোড করেছেন যে দেখে সত্যিই আনন্দ পেয়েছি। এই কাজকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। লোক, ভাষা, খাওয়া-দাওয়া, সেখানকার আদব-কায়দা, না জানি আরও কত কিছু দেখার সুযোগ পাওয়া যায়। ভাল জিনিস দেখার শখ থাকলে নজরটাও তৈরি করতে হয়। আর আমি তো ভাগ্যবান, আমি ভ্রমণ করার অনেক সুযোগ পেয়েছি। যখন মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম না, প্রধানমন্ত্রী ছিলাম না, আর আপনাদের মত অল্প বয়সের ছিলাম, আমি অনেক ঘুরেছি। বোধহয় ভারতবর্ষের এমন কোনও জেলা নেই, যেখানে আমার যাওয়ার সুযোগ হয় নি। জীবনকে তৈরি করার জন্য পর্যটনের এক বড় ভূমিকা আছে। আর এখন ভারতের যুবকরা সাহসের সঙ্গে পর্যটনে চলে যাচ্ছেন, কৌতূহল নিরসন করতে চলে যাচ্ছেন। আমি কোল ইণ্ডিয়া-কে বিশেষ ভাবে ধন্যবাদ দিতে চাই। নাগপুরের কাছে সাওনের-এ যেখানে কয়লাখনি আছে, সেখানকার ওয়েস্টার্ণ কোলফিল্ড লিমিটেড এক পরিবেশ বান্ধব ‘খনি পর্যটন এলাকা’ তৈরি করেছে। আর কথাই তো আছে যে কয়লাতে হাত কালো হয়, সেজন্যই লোক খনি থেকে দূরে চলে যায়। কিন্তু সেই কয়লা খনিকেই পর্যটনকেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলা? আর আমি খুশি যে এই তো সবে শুরু, এখন পর্যন্ত প্রায় দশ হাজারেরও বেশি মানুষ নাগপুরের কাছে সাওনের গ্রামে পরিবেশ বান্ধব খনি পর্যটন কেন্দ্র দেখেছেন। এই জায়গা নিজেই নতুন জিনিস দেখার সুযোগ করে দিচ্ছে। আমি আশা করব, ছুটিতে যদি আপনারা বাইরে বেড়াতে যান, তাহলে পরিচ্ছন্নতার বিষয়েও কিছু কাজ আপনারা করতে পারবেন। হয়ত খুব বেশি বৈজ্ঞানিকভাবে কাজ হচ্ছে না, কিন্তু হচ্ছে। আপনিও কি একজন পর্যটক হিসেবে পর্যটন কেন্দ্রের স্বচ্ছতায় গুরুত্ব দিতে পারেন না? আমার স্থির বিশ্বাস, আমাদের যুব বন্ধুরা এই বিষয়ে অবশ্যই সহায়তা করবেন। বিশ্বপর্যটনের এক বড় অংশকে আমরা এইভাবে নিজেদের দিকে টেনে নিতে পারি। আর তাহলে আমাদের দেশের কোটি কোটি নব্য যুবার রোজগারের উপায় করে দেওয়া সম্ভব হবে। সরকার হোক, সংস্থা হোক, সমাজ হোক বা নাগরিক – এই কাজ সবাই মিলে করতে হবে। আসুন, আমরা সেই উদ্দেশ্যে কিছু কাজ করি। আমার যুবা বন্ধুরা, ছুটিগুলো এমনি এমনি আসে আর চলে যায় – এটা আমার ভাল লাগে না। আপনারাও এই বিষয়টি ভাবুন। আপনারাও কি আপনাদের ছুটি, জীবনের গুরুত্বপূর্ণ বছরগুলো, মহত্বপূর্ণ এই সময়গুলো এইভাবেই চলে যেতে দেবেন? আমি কতকগুলো বিষয় বলছি – আপনারা ভেবে দেখতে পারেন। আপনারা কি এই ছুটিতে নিজেদের ব্যক্তিত্বের সঙ্গে আরও কোনও বাড়তি গুণ যোগ করার সঙ্কল্প নিতে পারেন না? যদি আপনি সাঁতার না জানেন তবে ছুটিতে সাঁতার শিখে নেওয়ার সঙ্কল্প করতে পারেন। যদি সাইকেল চালানো না জানা থাকে তাহলে পণ করুন, ছুটির দিনগুলোতে সাইকেল চালানো শিখবেন। আমি আজ পর্যন্ত দু’আঙুলে কম্পিউটার টাইপ করি – তাহলে কি টাইপিংটা শিখে নেব? দিনের শেষে দেখবেন জঞ্জাল থেকে আপনি কী অপূর্ব জিনিস বানিয়েছেন। ছুটির সময়টাতে নিজের ব্যক্তিত্ব বিকাশের জন্য, নিজের ক্ষমতা, কর্মকুশলতা বাড়ানোর জন্য কিছু করুন। শুধু আমি যে ক্ষেত্রগুলির কথা বললাম, তা-ই নয়, তার বাইরে আরও অজস্র কাজের সুযোগ আছে। এর ফলে আপনার ব্যক্তিত্ব, আপনার আত্মবিশ্বাস যে কতখানি বেড়ে যাবে – দেখে নেবেন। তুমি তো দারুণ বুদ্ধিমান, কিছু শিখে এসেছো। বন্ধুদের মধ্যে এটা নিয়ে কথা হবে। যেমন – “আমার নাম অভি চতুর্বেদী। হিন্দির মহান কবি মহাদেবী বর্মা পাখিদের খুব ভালবাসতেন। আমি অভিকে অভিনন্দন জানাচ্ছি, সেইসঙ্গে কৃতজ্ঞতাও জানাচ্ছি – তুমি আমাকে খুব গুরুত্বপূর্ণ কথা মনে করিয়ে দিয়েছো। মহীশূর থেকে শিল্পা কুকে আমাদের সকলের জন্য একটা খুব সংবেদনশীল বিষয় তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, আমাদের বাড়ির পাশে দুধওয়ালা, খবরের কাগজওয়ালা, পোস্টম্যান আসেন। কখনও কখনও বাসনওয়ালা, কাপড় বিক্রিওয়ালাও ওই পথ দিয়ে যান। গরমের দিনে আমরা কি কখনও তাঁদের জল পান করতে ডেকেছি, কখনও কি জল দিয়েছি তাঁদের? অবশ্য ভারতের তো এটাই পরম্পরা। আমার প্রিয় কৃষক ভাইবোনেরা, আপনারা ডিজিট্যাল ইণ্ডিয়ার কথা অনেক শুনেছেন। কিছু লোকের মনে হয়, ডিজিট্যাল ইণ্ডিয়া তো শহরের তরুণদের জগৎ! আপনারা যদি এই অ্যাপটি আপনাদের মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করে নেন, তাহলে কৃষি এবং আবহাওয়া সম্পর্কিত বহু তথ্য আপনার হাতে চলে আসবে। আর যদি আপনি কোনও প্রশ্ন তাঁদের সামনে রাখেন, তাঁরা তার জবাব দেবেন এবং আপনাকে বুঝিয়েও দেবেন। আমি আশা করি, আমার কৃষক ভাই-বোনেরা এই ‘কিসান সুবিধা অ্যাপ’ নিজেদের মোবাইল ফোনে ডাউনলোড করবেন। চেষ্টা করে তো দেখুন, এটা আপনার কাজে লাগছে কিনা। যদি কোনও অসুবিধা থাকে তবে আমাকে অভিযোগ জানাতে পারেন। আমার কৃষক ভাই-বোনেরা, অন্যদের তো গরমের ছুটি মানে বিশ্রামের সময়। কিন্তু কৃষকের জন্য এটা আরও ঘাম ঝরাবার মরশুম। তাঁরা বর্ষার জন্য অপেক্ষা করেন এবং বর্ষা আসার আগে নিজের ক্ষেতটিকে তৈরি করার জন্য প্রাণপণে চেষ্টা শুরু করে দেন যাতে বর্ষার এক ফোঁটা জলও নষ্ট না হয়। কৃষকদের জন্য চাষ শুরুর আগের এই সময়টা খুব গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু আমাদের দেশবাসীকেও ভাবতে হবে জল ছাড়া কীভাবে চলবে? আমরা আমাদের নিজ নিজ এলাকার পুকুর, জল আসার রাস্তা, পুকুরে জল ভরার পথ যদি নোংরা জঞ্জাল ফেলে বন্ধ করে রাখি, তবে জল আসা বন্ধ হয়ে জলের সঞ্চয় ক্রমশ কমে যাবে। দেশের মধ্যে এমন অনেক গ্রাম আছে, অনেক প্রগতিশীল কৃষক রয়েছেন, অনেক সচেতন নাগরিক রয়েছেন, যাঁরা এই কাজ করছেন। কিন্তু আমাদের আরও এগিয়ে যেতে হবে। তাতে আমি দেখেছি, কত রকমের আধুনিক প্রযুক্তি এসেছে আর তা কৃষিকাজে কত পরিবর্তন এনে দিয়েছে। কিন্তু এই প্রযুক্তিগুলিকে এখন কৃষকের ক্ষেত পর্যন্ত পৌঁছতে হবে। আর এখন কৃষকরাও বলছেন, রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমাতে হবে। আমি এই মতকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। রাসায়নিক সারের অত্যধিক ব্যবহার আমাদের ধরিত্রী মাকে অসুস্থ করে দিয়েছে। ভালো মশলা যদি রান্নায় দেওয়া হয়, তো রান্না ভাল হয়। কিন্তু ভাল ভাল মশলা যদি বেশি মাত্রায় দেওয়া হয়, তাহলে সেটা খেতে কি ভালো লাগে? সেটা খেতে নিশ্চয়ই ভাল লাগে না! রাসায়নিক সারের ব্যবহারও ঠিক এই রকম। যত ভাল সার-ই হোক না কেন, অতিরিক্ত এইসব সারের ব্যবহার ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াবে। প্রত্যেক জিনিষের ব্যবহার প্রয়োজনমত হওয়া দরকার। এতে খরচাও কম হয়, পয়সাও বাঁচে। যত জল বাঁচবে, কৃষকদের ততটাই লাভ হবে আর জীবনও ঠিক ততটাই বাঁচবে। আমার প্রিয় দেশবাসী, ৭-ই এপ্রিল হল ‘বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস’। একবার যদি কারও ডায়াবেটিস হয়, তারপর অনেক রোগরূপী অতিথি নিজের ঘরে, শরীরে প্রবেশ করে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, ২০১৪ সালে আমাদের দেশে সাড়ে ৬ কোটি ডায়াবেটিসের রোগী ছিলেন। তিন শতাংশ মৃত্যুর কারণ হল ডায়াবেটিস। ডায়াবেটিস দুই রকমের – টাইপ 1 ও টাইপ 2। টাইপ 1 হল বংশগত, মা-বাবার থাকলে, সন্তানদের হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। আর টাইপ-2-র কারণ হল বদভ্যাস, বয়সজনিত এবং অতিরিক্ত ওজন। আমরা সবাই জানি, ডায়াবেটিস-এর সবথেকে বড় কারণ হল আমাদের লাইফ-স্টাইল। কায়িক পরিশ্রম কম হচ্ছে। আমরা কি ৭ তারিখের অনুপ্রেরণা নিয়ে ডায়াবেটিস-কে পরাস্ত করার জন্য নিজস্ব জীবনশৈলিতে কিছু পরিবর্তন আনতে পারি না? যদি আপনি যোগব্যায়ামে রুচি রাখেন, তাহলে যোগাভ্যাস করুন। না হলে অন্তত কিছু দৌড়-ঝাঁপ করুন। যদি আমাদের দেশের প্রত্যেক নাগরিক সুস্থ হয়, তাহলে আমাদের ভারত সুস্থ থাকবে। কখনও কখনও আমরা সঙ্কোচবশত মেডিক্যাল চেক-আপ করাই না। আর তারপর যখন অবস্থা খুব সঙ্কটজনক হয়, তখন আমাদের মনে আসে যে আমরা ডায়াবেটিস-এর পুরনো রোগী। পরীক্ষা করতে তো কোনও কষ্ট নেই! এইটুকু তো করতেই পারেন। আর এখন তো সমস্ত সুযোগ-সুবিধা হাতের কাছেই, অনেক সহজেই হয়ে যায়। আপনি নিশ্চয়ই বিষয়টি নিয়ে ভাববেন। গত ২৪-শে মার্চ পৃথিবীতে ‘যক্ষ্মা দিবস’ পালিত হল। যখন আমি ছোটো ছিলাম, তখন যক্ষ্মার নাম শুনলেই ভয় পেতাম। সমগ্র পৃথিবীর তুলনায় আমাদের দেশে যক্ষ্মা রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি। আমার প্রিয় দেশবাসী, এই বিষয়ে অনেক কাজ চলছে। সঠিক চিকিৎসা করুন এবং রোগ নির্মূল না হওয়া পর্যন্ত চিকিৎসা চালিয়ে যান। আমি আপনাদের অনুরোধ করব, যক্ষ্মা হোক বা ডায়াবেটিস – এদের আমাদের পরাস্ত করতে হবে। ভারতকে এই রোগগুলি থেকে মুক্ত করতে হবে। কিন্তু এটা কেবল সরকার, ডাক্তার, ওষুধ দিয়ে হবে না – যতক্ষণ না আপনারা এগিয়ে আসেন। আর এই জন্য আমি আজ দেশবাসীদের অনুরোধ করছি, আসুন, ডায়াবেটিস-কে পরাস্ত করুন এবং যক্ষ্মা থেকে মুক্তি পান। দেশের দায়িত্ববান নাগরিক হওয়ার জন্য বাবাসাহেব আমাদের অনেক কিছু দিয়েছেন। সেই পথ অনুসরণ করে দেশের দায়িত্ববান নাগরিক হয়ে ওঁকে আমরা সবথেকে বড় শ্রদ্ধাঞ্জলি দিতে পারি। আপনাকে শুধু একটা মিসড কল করতে হবে। এই সুবিধা মাত্র একমাস হয়েছে, আর আমি খুশি হয়েছি যে, প্রায় ৩৫ লক্ষ মানুষ এর থেকে লাভবান হয়েছেন। আমি খুশি হব, আপনার সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে। আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক অভিনন্দন! অনেক অনেক ধন্যবাদ! গ) প্রযুক্তির উন্নতি ঘটানো, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নতুনদিল্লির ডি আর ডি ও ভবনে আগামী ১৫ অক্টোবর প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ভারতরত্ন ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামের জন্মবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। অনুষ্ঠানের অঙ্গ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী ডঃ কালামের একটি মূর্তির আবরণ উন্মোচন করবেন। ‘ডঃ কালামের জীবন উদযাপন’ শীর্ষক একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধন ও পরিদর্শন করবেন। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ এবং পাকিস্তানের সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের যে সমস্ত নাগরিক দীর্ঘমেয়াদি ভিসা (এলটিভি) নিয়ে ভারতে আসবেন তাঁদের জন্য কয়েকটি সুযোগ-সুবিধাদানের সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল চন্ডীগড় সফরে যাচ্ছেন। তিনি চন্ডীগড় বিমানবন্দরের অসামরিক বিমান টার্মিনালের উদ্বোধন করবেন এবং চন্ডীগড়ের পোস্ট গ্র্যাজুয়েট ইন্সটিটিউট অফ মেডিকেল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ – এর ৩৪তম সমাবর্তন অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। চন্ডীগড়ের ২৫ নম্বর সেক্টরে একটি নতুন আবাসন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী এবং সেখানে তিনি জনসমাবেশেও ভাষণ দেবেন। ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের (AAI) ১৫০০ বর্গ কিলোমিটার জমি মেসার্স এম পি ওয়্যারহাউসিং লজিস্টিক্স কর্পোরেশনকে (MPWLC)লিজ দেওয়ার প্রস্তাবে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্তিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ এই প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ পর্ষদের প্রস্তাব অনুযায়ী ওই জমিটি ব্যবহার করে ইন্দোর বিমানবন্দরে পচনশীল পণ্যের একটি কার্গো সেন্টার গড়ে তোলা হবে। প্রস্তাবিত কেন্দ্রটিতে ব্যবসায়ীদের প্রয়োজনে এক ছাদের তলায় বিশ্বমানের সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্হা থাকবে। শুধু তাই নয়, পচনশীল পণ্যের গুনগত মান যাতে বজায় থাকে তারও ব্যবস্হা করা হবে এই কেন্দ্রটিতে। সরকারি ও বেসকারি অংশীদারিত্বে এই সমস্ত সুযোগ-সুবিধার প্রসার ঘটাবে মেসার্স এম পি ওয়্যারহাউসিং লজিস্টিক্স কর্পোরেশন। এই কেন্দ্রটি স্হাপিত হলে স্হানীয় অধিবাসীদের জন্য কর্মসংস্হানের সুযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি হবে। এই কেন্দ্রটি চালাতে ১১৩ জনের মতো কর্মীর প্রয়োজন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। ওষুধপত্র, পোল্ট্রিজাত দ্রব্য এবং উদ্যানজাত পণ্য রপ্তানির ব্যাপক চাহিদা রয়েছে ওই রাজ্যের মালবা অঞ্চলে। বিমানবাহিনীতে ‘তেজস’ যুদ্ধবিমান যুক্ত হওয়ায় খুশি ও গর্ব প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এজন্য তিনি বিশেষ প্রশংসা করেছেন হিন্দুস্তান অ্যারোনটিক্স লিমিটেড (এইচএএল) এবং অ্যারোনটিক্যাল ডেভেলপমেন্ট এজেন্সি (এডিএ)-এর। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “এ দেশে তৈরি ‘তেজস’ যুদ্ধবিমান বিমানবাহিনীর কাজে যুক্ত হওয়ায় আমাদের মন-প্রাণ খুশি ও গর্বে ভরে গেছে। ‘তেজস’ যুদ্ধবিমানটি বিমানবাহিনীতে যুক্ত হওয়ায় আমি ভূয়সী প্রশংসা করি এইচএএল এবং এডিএ-র। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (২৮শে জানুয়ারি) নতুন দিল্লিতে জাতীয় সমর শিক্ষার্থী বাহিনীর (এনসিসি) সমাবেশে ভাষণ দেন। তিনি বলেন যে, এনসিসি ক্যাডেটদের মাঝে যখনই আসেন, তাঁর মনে পুরনো কথা ভেসে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ সারা বিশ্ব ভারতকে একটি উজ্জ্বল নক্ষত্র হিসেবে গণ্য করে। তিনি বলেন, ভারত কেবল সম্ভাবনাময়ই নয়, বরং সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করার ক্ষমতা ভারতের রয়েছে, এমন একটি ধারণা বিশ্ববাসী পোষণ করে। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিংজি তীক্ষ্ণ নজর রাখছেন পরিস্থিতির দিকে। রাজ্যগুলিরমুখ্যমন্ত্রীদের সঙ্গে কথা বলে উদ্ধার ও ত্রাণের কাজকর্ম সম্পর্কেও খোঁজখবরনিচ্ছেন তিনি। ত্রাণও উদ্ধার কাজে পূর্ণ সহযোগিতার আশ্বাস রইল কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রী এদিন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী জর্জ ফার্নানডেজের সাথেও সৌজন্য সাক্ষাৎ করেন| ইউনিভার্সাল সিরিয়ান অর্থোডক্স গির্জার প্রধান দ্বিতীয় এইচ এইচ মোরান মোর ইগনেশাস অ্যাপ্রেম ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ তারিখে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। জেকোবাইট সিরিয়ান অর্থোডক্স গির্জার প্রবীণ সদস্য সহ মোট নয়জন প্রতিনিধি তাঁর সঙ্গে ছিলেন। পোপের প্রতিনিধি হিসেবে দ্বিতীয় এইচ এইচ মোরান মোর ইগনেশাস অ্যাপ্রেম ভারত সফরে এসেছিলেন। বারাণসীতে বন্যা পরিস্হিতি দেখা দেওয়ায়প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেন, ‘ বারাণসীর বন্যা পরিস্হিতিতে গভীর উদ্বিগ্ন। পিএমওপরিস্হিতির ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখছে এবং স্হানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেচলেছে। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দলগুলি উদ্ধারও ত্রাণের জন্য বারাণসীতে মোতায়েন রয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বৃহস্পতিবার পেট্রাপোল ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট(আইসিপি)-এর আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে । কলকাতা থেকে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও যোগদেন এই ভিডিও কনফারেন্সে । পেট্রাপোল-বেনাপোল হল ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেএক গুরুত্বপূর্ণ স্থল সীমান্ত । দুটি দেশেরমধ্যে মোট বাণিজ্যিক পণ্যের ৫০ শতাংশেরও বেশি চলাচল করে পেট্রাপোলের মধ্য দিয়ে । পেট্রাপোল আইসিপি-টি এখন থেকে হয়ে উঠবে দক্ষিণ এশিয়ার বৃহত্তম স্থল বন্দর । নভি মুম্বাইআন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের প্রারম্ভিক পর্বের অনুষ্ঠানে আজ যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। নভি মুম্বাইতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে জওহরলাল নেহরু বন্দরকর্তৃপক্ষের চতুর্থ কন্টেনার টার্মিনালটি তিনি উৎসর্গ করলেন জাতির উদ্দেশে। এইউপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিবাজি মহারাজ জয়ন্তীর ঠিক একদিনআগেই তিনি এসে উপস্থিত হয়েছেন মহারাষ্ট্রে। শ্রী মোদীতাঁর ভাষণে বলেন, বিশ্বায়ন হল বর্তমান কালের এমনই এক বাস্তবতা যার সঙ্গে তালমিলিয়ে চলতে গেলে আমাদের প্রয়োজন উচ্চ প্রযুক্তি ও গুণমানের পরিকাঠামো। ‘সাগরমালা’প্রকল্পটি হয়ে উঠতে চলেছে বন্দরগুলির উন্নয়ন সম্পর্কিত একটি প্রকল্পমাত্র নয়, বরং,বন্দরচালিত এক বিশেষ উন্নয়ন প্রক্রিয়া। জলপথগুলির উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার যেবিশেষভাবে সচেষ্ট রয়েছে, একথারও তিনি উল্লেখ করেন তাঁর এদিনের ভাষণে। প্রধানমন্ত্রীবলেন, নভি মুম্বাই বিমানবন্দর প্রকল্পটি বহুদিন ধরেই মুলতবিঅবস্থায় ছিল। এই কারণে বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রেউন্নতমানের পরিকাঠামো গড়ে তোলা একান্ত জরুরি। এই ক্ষেত্রটির সার্বিক রূপান্তরেরলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার একটি বিমান পরিবহণ নীতি অনুসরণ করে চলেছে। শ্রী মোদীবলেন, বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রটিকে মজবুত করে তোলা সম্ভব হলে, আরও বেশি মাত্রায়অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধার প্রসার ঘটবে। বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থায় (ডব্লু টি ও) পরিসেবা বাণিজ্য সংক্রান্ত বিষয়ে সর্বাপেক্ষা কম উন্নত দেশ(এল ডি সি)-গুলিকে ভারত কর্তৃক বিশেষ সুবিধা প্রদানের জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করতে অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা । আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে মন্ত্রীসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ভারতের পক্ষ থেকে যেদিন বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে, সেদিন থেকে ১৫ বছর পর্যন্ত এই বিশেষ সুবিধাবলী বলবৎ থাকবে। পরিসেবা বাণিজ্য ক্ষেত্রে এলডিসি-গুলিকে এই ধরণের উদার প্রস্তাব দেওয়ায় সেদেশগুলির সৌহার্দ্য ভারতের পক্ষে যাবে। ইতিমধ্যেই ভারতের পক্ষ থেকে এলডিসি-গুলিকে পণ্য বাণিজ্যের ক্ষেত্রে শুল্ক মুক্ত মাশুল এর সুবিধা বা ‘ডিউটি ফ্রি ট্যারিফ প্রেফারেন্স’ (ডি এফ টি এফ) প্রকল্পে উদার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে । কার্নেগি এনডাওমেন্ট ফর ইন্টারন্যাশনাল পিস-এর প্রেসিডেন্ট মিঃ উইলিয়াম বার্নস-এর নেতৃত্বে ঐ সংস্থার এক প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ভারতে একটি কেন্দ্র স্থাপনের যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে কার্নেগি এনডাওমেন্ট তাকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য তথা উদার চিন্তাভাবনা ও মানসিকতার প্রতিফলন ঘটবে এর মধ্য দিয়ে। সকল বিজ্ঞান প্রেমীকে আমি অভিবাদন জানাই।তাঁদের বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধান প্রচেষ্টার জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল। হৃদ্য ও মৈত্রীপূর্ণ পরিবেশে আলোচনা করেন দুই নেতা। 5. দু’দেশের মধ্যে নিয়মিতভাবে উচ্চ পর্যায়ের সফর ও আলোচনার মাধ্যমে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উন্নততর হয়ে উঠেছে বলে বৈঠকে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর কাতার সফরকালে বিভিন্ন চুক্তি সম্পাদনের বিষয়টিকে তাঁরা আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান। ইতিমধ্যেই দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত যে চুক্তিগুলি রূপায়িত হচ্ছে তার সঙ্গে সম্পাদিত এই চুক্তিগুলি যুক্ত হলে দু’দেশের ঘনিষ্ঠ ও আন্তরিক সহযোগিতার সম্পর্ক আরও জোরদার হয়ে উঠবে বলে মত প্রকাশ করে দু’পক্ষই। 6. বাণিজ্য ও বিনিয়োগ জ্বালানি ও প্রতিরক্ষা এবং শ্রমশক্তি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থাগুলি যেভাবে কাজ করে চলেছে, তা বিশেষ প্রশংসনীয় বলে দাবি করা হয় বিভিন্ন বৈঠকে। এ সম্পর্কে গঠিত যৌথ কার্যনির্বাহী গোষ্ঠীগুলি যদি নিয়মিতভাবে আলোচনা ও মতবিনিময়ে মিলিত হয়, তা হলে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক এক নতুন দিকে মোড় নেবে বলে মনে করেন দু’দেশের নেতারাই। 7. ভারত ও কাতারের মধ্যে দীর্ঘদিন ধরেই যে শুভেচ্ছার সম্পর্ক রয়েছে, তাকে স্বীকার করে দু’দেশের নেতারাই এই মর্মে একমত হন যে, দুটি দেশের পারস্পরিক স্বার্থে এই সম্পর্কের আরও প্রসার ও ব্যপ্তি ঘটানো প্রয়োজন। উচ্চ পর্যায়ের রাজনৈতিক সফর ও বিনিময় কর্মসূচি, নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত সহযোগিতা, বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং সর্বোপরি দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কের বাতাবরণ আরও প্রসারিত করা প্রয়োজন বলেও মনে করেন তাঁরা। সংশ্লিষ্ট অঞ্চল তথা সমগ্র বিশ্বে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় দু’দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করে তাঁরা বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে এই ধরণের সহযোগিতা একান্ত জরুরি। ভারতে প্রতিরক্ষা সাজসরঞ্জাম উৎপাদনের ক্ষেত্রে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির মাধ্যমে যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধার প্রসার ঘটানো হয়েছে, তাতে বিশেষ আগ্রহ প্রকাশ করে কাতার। কাতারের সশস্ত্র বাহিনী ও উপকূল রক্ষী বাহিনীর ভারত ও কাতারে বিশেষ প্রশিক্ষণ ও অনুশীলন কর্মসূচি আয়োজনের যে প্রস্তাব দিয়েছে ভারত তাকে স্বাগত জানানো হয় কাতারের পক্ষ থেকে। শুধু তাই নয়, ধর্ম, সভ্যতা কিংবা কোন জাতি-গোষ্ঠীর সঙ্গে সন্ত্রাসকে কোনভাবেই যুক্ত করা উচিত নয়। 13. সন্ত্রাসকে যারা সমর্থন বা কোন না কোনভাবে সহায়তা যুগিয়ে যাচ্ছে তাদের সর্বতোভাবে বিচ্ছিন্ন করার ডাক দেন দু’দেশের নেতারাই। 16. নিরাপত্তা ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সম্পর্কিত যে প্রচেষ্টার কাজ শুরু হয়েছে, তার বিশেষ প্রশংসা করে বলা হয় যে সন্ত্রাসের মোকাবিলায় গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গ্রহণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া প্রয়োজন। সেইসঙ্গে, অর্থ পাচার ও মাদক পাচারের মতো ঘটনাও কঠোরভাবে দমন করা উচিত। এব্যাপারে দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদনের বিষয়গুলিকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানো হয়। একে অপরের বাণিজ্য মেলা ও প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করতেও সম্মতি প্রকাশ করে ভারত ও কাতার। ভারতীয় অর্থনীতিকে এক ইতিবাচক পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার অফুরন্ত সম্ভাবনার উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘স্মার্ট সিটি’ এবং ‘ক্লিন ইন্ডিয়া’র মতো যে সমস্ত নতুন উদ্যোগ ও কর্মসূচির কাজ শুরু করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী তা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। 23. বিদেশের পরিকাঠামো প্রকল্পগুলিতে পারস্পরিক অংশগ্রহণের প্রস্তাবেও সম্মত হয় দুটি দেশ। কাতার বিনিয়োগ কর্তৃপক্ষ এবং ভারতের জাতীয় পরিকাঠামো ও বিনিয়োগ তহবিল কর্তৃপক্ষের মধ্যে সহযোগিতা প্রসারের সম্ভাবনা সম্পর্কেও মতবিনিময় করেন দু’দেশের নেতারা। কাতারের প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীরা যাতে ভারতের জাতীয় পরিকাঠামো ও বিনিয়োগ তহবিলে অংশগ্রহণ করতে পারেন সেজন্য কাঠামোগত একটি চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিকে স্বাগত জানায় দু’পক্ষই। 24. বিনিয়োগের সুযোগ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে নিয়মিতভাবে তথ্য বিনিময়ের ওপরও জোর দেওয়া হয় নেতৃবৃন্দের বৈঠকে। বিনিয়োগ বৃদ্ধির লক্ষ্যে দু’দেশের বিনিয়োগ সংক্রান্ত সংস্থাগুলির সঙ্গে সরকারি ও বেসরকারি পর্যায়ে নিয়মিত বৈঠক আয়োজনের সপক্ষেও মতপ্রকাশ করা হয়। ভারতের শক্তি ও জ্বালানি নিরাপত্তায় কাতারের এই বিশেষ অবদানের সপ্রশংস উল্লেখ করে ভারত। 28. ভারতের নতুন ‘হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধান ও ছাড়পত্রদান নীতি’ এবং ‘ক্ষুদ্র তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র আবিষ্কার সম্পর্কিত নীতি’র সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে তেল ও গ্যাসের নতুন ব্লক অনুসন্ধানে কাতারের সংস্থাগুলির অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানানো হয় ভারতের পক্ষ থেকে। 29. ভারতে তেল ও গ্যাসের কৌশলগত মজুতভাণ্ডার গড়ে তোলার লক্ষ্যে দ্বিতীয় পর্যায়ে যে উদ্যোগ গ্রহণের কাজ শুরু করা হয়েছে তাতেও অংশগ্রহণের জন্য ভারত আমন্ত্রণ জানায় কাতারের সংস্থাগুলিকে। 30. ব্যাঙ্ক, বিমা এবং মূলধন বাজার সহ বিভিন্ন আর্থিক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তোলার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন দু’দেশের নেতারা। ভারত ও কাতারের মধ্যে স্বাস্থ্য সম্পর্কিত চুক্তি সম্পাদনের বিষয়টিকে বিশেষভাবে স্বাগত জানানো হয় আলোচনাকালে। 32. আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা স্থাপনে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর অগ্রণী ভূমিকার বিশেষ প্রশংসা করেন কাতারের নেতৃবৃন্দ। তাঁরা স্বীকার করেন যে বিশ্বে নতুন সৌর প্রযুক্তির প্রসারে তাঁর এই উদ্যোগ বিশেষ সুফল এনে দেবে। 34. ভারত ও কাতারের জনসাধারণকে পরস্পরের আরও কাছে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির একটি বড় ধরনের ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করে ভারত ও কাতার দুটি দেশই। দ্বিপাক্ষিক ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক কর্মসূচিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে দু’দেশের সাংস্কৃতিক গোষ্ঠী ও ক্রীড়া প্রতিনিধিদের আরও ঘন ঘন বিনিময় সফরসূচির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে কাতার ও ভারতীয় কর্তৃপক্ষ। আগামী ২০১৯ সালে ‘কাতার-ভারত সংস্কৃতি বর্ষ’ উদযাপনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করায় কাতারের সংগ্রহশালা কর্তৃপক্ষকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। 35. দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংযোগ বৃদ্ধি করার বিষয়টি ভারত-কাতার সম্পর্ক প্রসারের একটি উল্লেখযোগ্য দিক বলে মনে করেন দু’দেশের নেতারাই। কাতারে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের কল্যাণ ও নিরাপত্তার বিষয়টি সুনিশ্চিত করার জন্য কাতারের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দক্ষতা উন্নয়ন এবং যোগ্যতার স্বীকৃতিদান সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষরের মতো বিষয়গুলিকেও স্বাগত জানানো হয় দু’দেশের পক্ষ থেকে। 36. পশ্চিম এশিয়া, মধ্যপ্রাচ্য এবং দক্ষিণ এশিয়ায় নিরাপত্তা পরিস্থিতি সহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে মতবিনিময় করেন ভারত ও কাতারের নেতৃবৃন্দ। 37. রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্কার প্রসঙ্গে এক বহুপাক্ষিক ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্কারের বিষয়টিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে বিশেষত নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপের জন্য একজোট হয়ে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানানো হয় দু’দেশের মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনাকালে। 38. কাতারে তাঁকে যেভাবে সাদর অভ্যর্থনা জানানো হয়েছে এবং তাঁর আতিথেয়তার ব্যবস্থা করা হয়েছে সেজন্য মহামান্য আমিরকে আন্তরিক ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানান প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে বিভিন্ন দেশের ভারতীয়বংশোদ্ভূত আইনসভার সদস্যদের সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে ভাষণ দেন। তিনি বলেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত এইসব মানুষেরা যে তাঁদের নতুন বসবাসের জায়গায়নিজেদের সম্পূর্ণভাবে মানিয়ে নিয়েছেন, সেটা আশ্চর্য নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমার মনে হচ্ছে, আজকে যেন দিল্লিতে ভারতীয় উৎসমূলেরবিশ্ব আইনসভার এক ক্ষুদ্র সংস্করণের অধিবেশন বসেছে। ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা যে আজমরিশাস, পর্তুগাল এবং আয়ারল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী পদে বসেছেন, তিনি তাও উল্লেখকরেন। তিনি বলেন যে, ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা বিভিন্ন রাষ্ট্র ও সরকারের প্রধান হিসাবেওযোগ্যতার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। বিদেশে কর্মরত ভারতীয় নাগরিকদের সমস্যা মোকাবিলা বিষয়ে নিরবচ্ছিন্নভাবেনজরদারি চালানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী বিদেশ মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজের প্রশংসাকরেন। এই প্রসঙ্গে তিনি ‘মদদ’ নামে এক পোর্টালের মাধ্যমে এই বিষয়ে নজরদারি চালানোএবং বিভিন্ন দূতাবাসগুলির অভিযোগ নিষ্পত্তিকল্পে কাজের উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনাবাসী ভারতীয়রা ভারতের উন্নয়নের অংশীদার বলে সরকারবিশ্বাস করে। ২০২০ সাল পর্যন্ত দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে যে কর্মপরিকল্পনা নিতি আয়োগকর্তৃক প্রণয়ন করা হয়েছে, তাতে অনাবাসী ভারতীয়দের গুরুত্বপূর্ণ অবদান আছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অস্থিতিশীলতার এই সময়ে ভারতীয় সভ্যতা ও সাংস্কৃতিকমূল্যবোধ সমগ্র বিশ্বকে পথ দেখাতে পারে। বিভিন্নবিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন আধিকারিক-প্রশিক্ষার্থীরা।সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় বাজেট, কর কাঠামোর আওতায় আরও বেশি সংখ্যক করদাতারঅন্তর্ভুক্তি এবং উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আলোচনা করেনতাঁরা। জনসাধারণেরআশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে কাজ করে যাওয়ার জন্য আধিকারিক-প্রশিক্ষার্থীদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি শ্রী আসরফ গনি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে ১৫ মার্চ, ২০১৬ তারিখে টেলিফোন করেন। উভয় নেতাই রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক বিষয় সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও বাড়ানোর উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। ভারত ও তিউনিশিয়ার মধ্যে বিচারক্ষেত্রে সহযোগিতারলক্ষ্যে সমঝোতাপত্র স্বা ক্ষরের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বুধবার অনুমোদন হয়েছে। সাম্প্রতিককালে ভারত ও তিউনিশিয়ার মধ্যেসামাজিক, সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক ইতিবাচক লক্ষ্যে এগোচ্ছে। তাঁর এই সফর পরবর্তীকালে ভারত ও জাপানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কযেভাবে আরও উন্নত হয়ে উঠেছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আপনাদের এই সুন্দর রাজ্যে আজ আমার সফর মিজোরামের বন্ধুত্বপূর্ণ মানুষদেরসঙ্গে কাটানো সুসময়ের সেই পুরনো স্মৃতি ফিরিয়ে নিয়ে এসেছে| আমি আপনাদের সবাইকে এবংঅবশ্যই মিজোরামের সমস্ত মানুষদের মেরি ক্রিস্টমাস ও হ্যাপি নিউ ইয়ার জানিয়ে শুরুকরছি| নতুন বছর সবার জন্য সুখ ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসুক| শান্তি ও প্রশান্তির এক ভূমি| উষ্ণ ও অতিথিবত্সল এখানকার মানুষ| দেশের মধ্যে সর্বাধিক সাক্ষরতার হারের এক রাজ্য| স্ব-সহায়ক দলগুলো কেন্দ্রীয় সরকারের প্রদত্ত সুদের ভর্তুকি সহ উত্তর-পূর্বাঞ্চলউন্নয়ন অর্থ নিগমের ঋণ সংযুক্তির মধ্য দিয়েও উপকৃত হচ্ছে| আমাকে বলা হয়েছে, উত্তর পূর্বাঞ্চল উন্নয়ন মন্ত্রক বিভিন্ন দিক দিয়েউত্তর-পূর্বাঞ্চল হস্তকারু ও হস্ততাঁত উন্নয়ন নিগমের এবং উত্তর-পূর্বের আঞ্চলিককৃষি বিপণন নিগমের কাজকর্মে সহায়তা করে চলেছে| রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলো প্রশিক্ষণ দিচ্ছে এবং কারিগর, তাঁতি ও কৃষকদেরসঙ্গে হাত মিলিয়ে বাজার ও খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য সহায়তা করছে| এই প্রকল্প রূপায়িত হওয়ার মধ্য দিয়ে মিজোরাম উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মধ্যেত্রিপুরা ও সিকিমের পর তৃতীয় বিদ্যুত-উদ্বৃত্ত রজ্যে পরিণত হলো| এই প্রকল্পটি প্রধানমন্ত্রী বাজপেয়ীজি’র সরকারের সময় ১৯৯৮ সালে ঘোষিতহয়েছিল এবং এর মঞ্জুরি দেওয়া হয়েছিল, কিন্তু সম্পূর্ণ হতে দেরী হয়ে যায়| এই প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করার মধ্য দিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের চলতি কাজগুলোসমাপ্ত করা এবং উন্নয়নের এক নতুন যুগে এই অঞ্চলকে নিয়ে যাওয়ার জন্য আমাদেরপ্রতিশ্রুতিই প্রতিফলিত হয়েছে| আমার সরকার উত্তর পূর্বাঞ্চলের বিদ্যুত পরিবহন পদ্ধতির ব্যাপক উন্নয়নেরজন্য প্রায় ১০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করছে| ২০২২ সালে ভারত স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ করবে, পরবর্তী এই পাঁচ বছরউন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ অগ্রগতি লাভ করার সাফল্য অর্জনে পরিকল্পনা ও রূপায়ণেরক্ষেত্রে এক সুযোগ প্রদান করছে| বন্ধুগণ, উন্নয়নের সুফল যদি সবার কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, তাহলেই নব-ভারতেরস্বপ্ন বাস্তব হতে পারে| একটি হচ্ছে জল সরবরাহ, বিদ্যুত, যোগাযোগ এবং পর্যটনের উন্নয়নের বিশেষপ্রকল্পের সঙ্গে সম্পর্কিত ব্যবহারিক পরিকাঠামো| এন.এল.সি.পি.আর.-এ যেখানে রাজ্য সরকারগুলো ১০ শতাংশ অর্থ প্রদান করে থাকে,তার পরিবর্তে নতুন প্রকল্পটি সম্পূর্ণরূপেই অর্থাৎ একশ শতাংশই কেন্দ্রীয় তহবিলেরমাধ্যমে পরিচালিত হবে| কেন্দ্রীয় সরকার এই প্রকল্পে আগমী তিন বছর ধরে উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলোকে৫৩০০ কোটি টাকা দিয়ে যাবে| কেন্দ্রীয় সরকার গত তিন বছরে ৩২০০০ কোটি টাকার বিনিয়োগের মাধ্যমে ৩৮০০কিলোমিটার জাতীয় সড়ক নির্মাণের জন্য মঞ্জুরি দিয়েছে| যার মধ্যে প্রায় ১২০০কিলোমিটার সড়ক ইতোমধ্যেই নির্মাণ হয়ে গেছে| কেন্দ্রীয় সরকার আগামী দুই-তিন বছরে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে মহাসড়ক ও সড়কের একটিনেটওয়ার্ক তৈরি করার জন্য ‘উত্তর-পূর্বাঞ্চল বিশেষ দ্রুততর সড়ক উন্নয়ন কর্মসূচি’রঅধীনে আরও ৬০,০০০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে এবং ভারতমালা’র অধীনে আরও ৩০,০০০ কোটিটাকা বিনিয়োগ করবে| উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবগুলি রাজ্যের রাজধানীকে রেল মানচিত্রে নিয়ে আসার জন্যআমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ| ভারত সরকার ৪৭,০০০ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে ১৩৮৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ১৫টি নতুনরেলপথ নির্মাণের প্রকল্প হাতে নিয়েছে| আসামের শিলচরের সঙ্গে মিজোরামের ভৈরবীর মধ্যে রেললাইন সংযোগের মধ্য দিয়ে গতবছর মিজোরামে রেল এসেছে| আমি ২০১৪ সালে আইজলের সঙ্গে রেল সংযোগের জন্য নতুন রেললাইনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছি| রাজ্য সরকারের সহায়তায় আমরা রাজ্যের রাজধানী আইজলকে ব্রডগেজ রেল লাইনেসংযুক্ত করব| এই সমস্ত উদ্যোগ অর্থনৈতিক সংযোগের সুযোগ বৃদ্ধি করবে এবংউত্তর-পূর্বাঞ্চলের সার্বিক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও উন্নয়নে অবদান রাখবে| বন্ধুগণ, মিজোরামের উচ্চ সাক্ষরতার হার, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং ইংরেজিভাষায় কথাবলা মানুষের বেশিমাত্রায় সহজলভ্যতা মিজোরামকে এক আদর্শ পর্যটনের গন্তব্যরাজ্য হিসেবে গড়ে ওঠার সুযোগ করে দিয়েছে| আমি নিশ্চিত যে, মিজোরাম বিশ্বের মঞ্চে বিখ্যাত হওয়ার মতো খেলোয়াড়দের দেওয়াঅব্যাহত রাখবে| কয়েকটি ট্যুইট বার্তার মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী কামনা করেছেন যে, এই সমস্ত উৎসব যেন দেশের নাগরিকদের জীবনে সুখ ও আনন্দ ডেকে আনে। এই সমস্ত উৎসব যেন আমাদের সকলের জীবনে আনন্দ ও সমৃদ্ধির সূচনা করে। নতুন দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৃহস্পতিবারের (৬ ডিসেম্বর) বৈঠকে ভারত ও জাপানের মধ্যে পরিবেশমূলক কর্মপদ্ধতি সংক্রান্ত সমঝোতাপত্রে অনুমোদন মিলেছে। এই সমঝোতাপত্রের ফলে দুই দেশের মধ্যে পরিবেশের সুরক্ষা এবং প্রাকৃতিক সম্পদের সুষ্ঠু পরিচালনার মতো বিষয়গুলিতে আরও দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে। এমনকি, এই সমঝোতার ফলে দুই দেশের মধ্যে তথ্য ও প্রযুক্তি বিনিময়ের পথও প্রশস্ত হবে। পরিবেশ অবক্ষয়ের প্রভাব সমাজে আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর মানুষের ওপর সবচেয়ে বেশি পড়ে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার এক বিশেষ বৈঠকে মিলিত হন সরকারের শীর্ষ পদে কর্মরত বিজ্ঞানীদের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীবিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে ভারতের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির মূল চাবিকাঠি হল বিজ্ঞান,প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন প্রচেষ্টা। দেশের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে বিজ্ঞানকে কাজেলাগানোর লক্ষ্যেই বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রকে বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়ে আসছে তাঁরসরকার। রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী মিঃ দিমিত্রি রোগোজিন বুধবার এখানে সাক্ষাৎকরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। মিঃ রোগোজিনের সঙ্গে আলোচনাকালে ভারত-রাশিয়া দ্বি-পাক্ষিক সম্পর্কপ্রসারের ক্ষেত্রে কমিশনের ইতিবাচক ভূমিকায় সন্তোষ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। ফ্রান্সেরইওরোপ এবং বিদেশ সংক্রান্ত বিষয়ের মন্ত্রী মিঃ জ্যাঁ-ওয়াইভেজ লা দ্রায়াঁ আজ এখানেএক সাক্ষাৎকারে মিলিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। শ্রী মোদীবলেন, ভারত-ফ্রান্স কৌশলগত অংশীদারিত্বের বিষয়টি শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কপ্রসারের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, বরং আঞ্চলিক তথা বিশ্ব পরিস্থিতিতে শান্তি ওস্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তা এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছে। “ ওড়িশার এক হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ফলে প্রাণহানির সংবাদেআমি গভীরভাবে উদ্বিগ্ন। এই মর্মান্তিক ঘটনা আমাদের বিমূঢ় করে দেয়। শোক-সন্তপ্তপরিবারগুলির জন্য আমি চিন্তিত। আহতব্যক্তিরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আমি আশা করি। আমি মন্ত্রী ধর্মেন্দ্র প্রধানের সঙ্গেও কথা বলে আহত ওক্ষতিগ্রস্তদের জন্য সম্ভাব্য সকল রকম সাহায্য নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছি। হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের এই নিদারুণ ঘটনা সম্পর্কে আমিকথা বলেছি ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নবীন পট্টনায়েকের সঙ্গেও। প্রধানমন্ত্রী স্নাতক স্তরের ছাত্রছাত্রীদেরকে স্মরণ করিয়ে দিয়ে বলেন, তাদের সাফল্যের পিছনে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের অবদান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, এদের সর্বাদাই লক্ষ্য হওয়া উচিৎ সমাজের দরিদ্র ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর কল্যাণে কাজ করে যাওয়া। এই লক্ষ্য অর্জনের মাধ্যমেই ছাত্রছাত্রীদের অন্তরের খুশি পূরণ হওয়া সম্ভব বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এদের কাজ নিঃসন্দেহ কঠিন, একথা স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী আস্থা ব্যক্ত করেন যে, এদের শিক্ষা এবং সেবার মনোবৃত্তি নিজেদের ধার্য লক্ষ্য পূরণে সহয়তা করবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, মানসিক রোগের ক্ষেত্রে কুসংস্কার প্রায়শই উপযুক্ত চিকিৎসা প্রদান ও পরিচর্যায় বাধার সৃষ্টি করে। মানসিক স্বাস্থ্যের বিষয়টি জ্ঞানের অভাব, সচেতনতার অভাব ও কুসংস্কার – এই তিনটি চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হয়। মানসিক স্বাস্থ্যের চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং বৈজ্ঞানিক উপায়ে সুস্থ করে তোলাও সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী ডিগ্রি অর্জনকারী ও স্নাতকোত্তর স্তরের সকল ছাত্রছাত্রীদের অভিনন্দন জানান। এছাড়া প্রধানমন্ত্রী এখানে নিমহান্স-এর এম.আার-পেট কেন্দ্র উদ্বোধন করেন। পাশাপাশি, ২০১১-য় আর্থ-সামাজিক বর্ষের মানুষজনকে নিয়ে যে জনগণনা হয়, তার আওতায় থাকা কম করে একটি তালিকাভুক্ত বঞ্চিত শ্রেণীর পরিবারবর্গকেও সচল রাখা সম্ভব হবে এভাবে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ শীর্ষআদালত ও উচ্চ আদালতগুলির বিচারপতি এবং দুই আদালতেরই অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতিদের বেতন,গ্র্যাচ্যুইটি, ভাতা, পেনশন ইত্যাদির সংশোধন সম্পর্কিত এক প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়াহয়। এছাড়াও,বেতন সংশোধনের পরিপ্রেক্ষিতে পেনশন, গ্র্যাচ্যুইটি ইত্যাদি খাতে প্রদেয় অতিরিক্তসুযোগ-সুবিধা লাভ করবেন দুই আদালতেরই ২,৫০০ জন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি। “বিশ্ব বেতার দিবসেঅভিনন্দন। আলোচনা ও মতবিনিময়এবং শিক্ষা ও যোগাযোগের একটি চমৎকার মাধ্যম হল বেতার। আমার নিজের ‘মন কি বাত’অনুষ্ঠানের অভিজ্ঞতায় আমি অনুভব করেছি যে সারা ভারতের সাধারণ মানুষের সঙ্গে আমারএক যোগসূত্র স্থাপিত হয়েছে। ফিলিপিন্স সফরের উদ্দেশে রওনা হওয়ার আগে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরবিবৃতি। “আমি ১২ নভেম্বর থেকে তিন দিনের সফরে ম্যানিলায় থাকব। এটিই হবে ফিলিপিন্সেআমার প্রথম দ্বিপাক্ষিক সফর, যেখানে আমি আসিয়ান-ভারত এবং পূর্ব এশিয়ার দেশগুলিরশীর্ষ বৈঠকেও অংশগ্রহণ করব। এই দুটি শীর্ষ বৈঠক ছাড়া আমি ‘আসিয়ান’ রাষ্ট্র জোটের ৫০তম বার্ষিকী উপলক্ষেআয়োজিত বিশেষ অনুষ্ঠান, আঞ্চলিক সার্বিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব (আরসিইপি) বিষয়েনেতৃবৃন্দের বৈঠক এবং আশিয়ান বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত শীর্ষ বৈঠকেও অংশগ্রহণকরব। ফিলিপিন্সে আমার প্রথম সফরকালে আমি সেদেশের রাষ্ট্রপতি মাননীয় মিঃ রড্রিগোদুতার্তে-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকের জন্য অপেক্ষা করে আছি। আমি অন্যান্য আসিয়ানও পূর্ব এশীয় দেশগুলির শীর্ষ বৈঠকের নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও আলাপ-আলোচনা করব। ফিলিপিন্সে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গেও যোগাযোগের জন্য আমিঅপেক্ষা করে আছি। আন্তর্জাতিক ধান্য গবেষণা ইন্সটিটিউট (আইআরআরআই) তাদের বিজ্ঞান-ভিত্তিকগবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে উন্নত প্রজাতির ধানের বীজ তৈরি করেছে এবং খাদ্যসংক্রান্ত সঙ্কট মোকাবিলায় বিশ্বকে সহায়তা করেছে। আইআরআরআই সংস্থায় বিরাট সংখ্যায়ভারতীয় বিজ্ঞানীরা কাজ করছেন এবং এক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়নে অবদান রাখছেন। ২০১৭’র১২ জুলাই আমার মন্ত্রিসভা বারাণসীতে দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক কেন্দ্র গড়ার জন্য ঐসংস্থার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এটিই হবে তাদের সদর দপ্তরের বাইরে আইআরআরআই-এরপ্রথম গবেষণা কেন্দ্র। বারাণসীর এই গবেষণা কেন্দ্রটি ধানের উৎপাদন বৃদ্ধি করে,উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করে, মূল্য সংযুক্তি ঘটিয়ে, কৃষিকার্যে বৈচিত্র্য এনে এবংকৃষকদের দক্ষতা বৃদ্ধির মাধ্যমে, তাদের আয় বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা নেবে। ১৯৮৯ সালে এই সংস্থাস্থাপনের পর ফিলিপিন্স-এ প্রায় ১৫ হাজার অঙ্গহীন মানুষের জন্য ‘জয়পুর ফুট’ প্রদানকরে তাঁদের নতুন করে বাঁচার স্বপ্ন দেখিয়েছে। ভারত সরকার এই সংস্থার মহান মানবিককাজে সহায়তার জন্য কিছু অর্থ দিচ্ছে। ইঞ্জিনিয়ার্সদিবস উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতরত্নএম বিশ্বেশ্বরাইয়ার জন্মবার্ষিকীতে গর্ব ও আনন্দের সঙ্গে তাঁকে সম্মান জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আসামের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সর্বানন্দসোনোয়ালের সঙ্গে রবিবার ও আজ ঐ রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করে জানিয়েছেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার ঐ রাজ্যের বন্যাপরিস্থিতির ওপর নিরন্তর নজর রাখছে আর বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় আসাম সরকার’কেসবরকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “যেদিন থেকে আসামে বন্যা দেখা দিয়েছে,তখন থেকেই কেন্দ্রীয় সরকার সদাসর্বদা পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে। শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে আগামীকাল, শুক্রবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি বিভিন্ন বিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মত বিনিময় করবেন| ভারত ছাড়োআন্দোলনের সূচনায় দেশের প্রবীণ নেতাদের কারারুদ্ধ করা হলেও দেশের বিভিন্নপ্রান্তের তরুণ ও যুবকরা কিভাবে এই আন্দোলনকে সেই সময় এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন সেকথাও এদিন স্মরণ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীবলেন, দেশের তরুণ ও যুবকরা যখন নেতৃত্বের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নেন তখন লক্ষ্য পূরণনিশ্চিত। তিনি বলেন, জেলাশাসকরা শুধুমাত্র জেলাগুলিরই প্রতিনিধি নন, একইসঙ্গেতাঁরা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের তরুণ ও যুব সমাজের প্রতিনিধিও। দেশের জেলাশাসকরা একদিকথেকে খুবই ভাগ্যবান কারণ জাতির সেবায় নিজেদের নিয়োজিত করার সুযোগ তাঁরা লাভকরেছেন। শ্রী মোদীবলেন, দেশের প্রত্যেক ব্যক্তি, প্রতিটি পরিবার এবং প্রত্যেকটি সংস্থা ও সংগঠনকেসরকার পরামর্শ দিয়েছে এমন কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য স্থির করার জন্য যা আগামী ২০২২সালের মধ্যে অবশ্যই পূরণ করা সম্ভব। দেশেরকয়েকটি জেলা যে বরাবরই জল, বিদ্যুৎ, শিক্ষা ও স্বাস্থ্যের দিক থেকে যথেষ্ট অনগ্রসররয়ে গেছে সে কথাও এদিন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের সর্বাপেক্ষাঅনগ্রসর ১০০টি জেলায় যখন আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির উন্নয়ন ঘটে, তখন তা দেশেরউন্নয়নের সার্বিক অগ্রগতিকে নানাভাবে উৎসাহিত করে। সুতরাং, এই সমস্ত জেলারউন্নয়নের দায়িত্ব গ্রহণ করতে হবে সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদেরই। ঐ খসড়ার ভিত্তিতে যে সঙ্কল্প তাঁরাগ্রহণ করবেন তার মধ্যে ১০ থেকে ১৫টি বিশেষ লক্ষ্য চিহ্নিত করা যেতে পারে যা আগামী২০২২ সালের মধ্যে পূরণ করা সম্ভব। ‘নতুন ভারত’ ওয়েবসাইটটির গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যগুলিরকথা ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামের ওপর একটি অনলাইন ক্যুইজএবং ‘সঙ্কল্পেই সিদ্ধিলাভ’ আন্দোলনের বিভিন্ন ঘটনাবলীর ওপর এক বিশেষ দিনপঞ্জীরসন্ধান পাওয়া যাবে ঐ ওয়েব পোর্টালটিতে। রিলে দৌড় প্রতিযোগিতার সঙ্গে উন্নয়ন প্রচেষ্টারতুলনা করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, একটি রিলে দৌড় প্রতিযোগিতায় যেমন একজনঅ্যাথলিটের কাছ থেকে আরেকজন অ্যাথলিটের কাছে ব্যাটন পৌঁছে দেওয়া হয়, সেইভাবে একজনজেলাশাসকের কাছ থেকে অন্য জেলাশাসকের কাছেও উন্নয়নের ব্যাটন পৌঁছে দেওয়া যেতেপারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক ক্ষেত্রেই জনসচেতনতারঅভাবেই কাঙ্খিত লক্ষ্যে কোন কোন কর্মসূচির রূপায়ণকে পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয় না। এইকারণে, জেলাশাসকদের উচিৎ এলইডি বাল্ব, ভিম অ্যাপ সহ বিভিন্ন কর্মসূচির সুফলসম্পর্কে জনসাধারণকে সচেতন করে তোলা। একইভাবে, ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ কর্মসূচির সাফল্যনির্ভরশীল সক্রিয় প্রশাসন এবং সাধারণ মানুষের সচেতনতার ওপর। জনসাধারণের সক্রিয়অংশগ্রহণের মাধ্যমেই পরিস্থিতির পরিবর্তন সম্ভব বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, একজনজেলাশাসক বাইরে গিয়ে বাস্তব পরিস্থিতি সম্পর্কে যত বেশি অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতেপারবেন, তত বেশি করে তিনি সক্রিয়ভাবে কাজ করতে পারবেন তাঁর অফিসের ফাইলপত্রে। জিএসটিসম্পর্কে আলোচনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জেলাশাসকদের নির্দেশ দেন নিজের নিজেরজেলায় ব্যবসায়ী ও বাণিজ্য প্রতিনিধিদের কাছে জিএসটি-কে একটি ‘ভালো এবং সরল কর ব্যবস্থা’( Good and Simple Tax ) বলে ব্যাখ্যা করার জন্য। বাণিজ্যিক কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিতথা সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলির জিএসটি-র আওতায় নথিভুক্তির বিষয়টিকে নিশ্চিত করারজন্যও তিনি নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট জেলাশাসকদের। এছাড়া, পণ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রেসরকারি বৈদ্যুতিন বিপণন ব্যবস্থার প্রসারেও জেলাশাসকদের সক্রিয় ভূমিকা পালনেরবিষয়টি স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি শাসন ব্যবস্থার মূল লক্ষ্য হওয়াউচিৎ দেশের দরিদ্রতম মানুষটিরও জীবনযাত্রাকে উন্নত করে তোলা – মহাত্মা গান্ধীর এইবাণীর কথাও এদিন তাঁর ভাষণে পুনরুচ্চারণ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রাত্যহিক দিনলিপিঅনুসারে দরিদ্র জনসাধারণের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন সম্ভব করে তোলার জন্য তাঁরা কোনকাজ করেছেন কিনা সে সম্পর্কে জেলাশাসকদের নিজের নিজের কাজের পর্যালোচনা করারওপরামর্শ দেন তিনি। রমজান উপলক্ষে মুসলিম সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “পবিত্র রমজান মাসের সূচনায় মুসলিম সম্প্রদায়কে জানাই আমার অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার সন্ধ্যায় জেনেভা রওনা হওয়ার আগে দোহায় বসবাসকারী ভারতীয়দের উদ্দেশে ভাষণ দিলেন এবং তাঁদের সাথে কথা বললেন। কাতার-এর ভারতীয় সমাজে এক উৎসাহী জনসমাবেশের উদ্দেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা কখনই কারও থেকে বিচ্ছিন্ন নন। তিনি বলেন, বিশ্ব জুড়ে ভারতের ভাবমূর্তির উন্নতি ঘটেছে এবং সারা বিশ্বে ভারতীয়দের প্রতি অত্যন্ত আগ্রহ লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এই পরিবর্তন ভারতের ১২৫ কোটি মানুষের জন্যই বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দুর্নীতি ভারত’কে দীর্ঘদিন ধরেই পীড়া দিয়ে আসছে আর তাঁর সরকার একে উৎখাত করতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। শ্রী মোদী বলেন, তাঁর কাতার সফর পূর্ণাঙ্গ ও সফল আলোচনার সাক্ষী হয়ে রইল, যার ফলে দুটি দেশের মধ্যে ঘনিষ্ঠ মৈত্রীর এক নতুন যুগের সূচনা ঘটবে। সবাই পবিত্র দর্শন করুক, কেউ যেন দুঃখ ভোগ না করে। থাইল্যান্ডেররাজা মহামান্য ভূমিবল আদুল্যাদেজ-এর জীবনাবসানে শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “নানাজি দেশমুখ-এর জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করি। হামবুর্গেজি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার সাক্ষাৎকরেন কোরিয়া সাধারণতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট মিঃ মুন জে-ইন-এর সঙ্গে। প্রেসিডেন্ট পদেনির্বাচনে জয়লাভের জন্য প্রেসিডেন্ট মুনকে আন্তরিক অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। এ বছর নভেম্বরে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ওপর ভারতে যেবিশেষ প্রদর্শনী ‘ফুড ইন্ডিয়া’ আয়োজিত হতে চলেছে, তাতে ইতালির সক্রিয় অংশগ্রহণপ্রার্থনা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। জাতীয় বিনিয়োগ ও পরিকাঠামো তহবিলে নরওয়ের পেনশন তহবিল সংস্থাগুলিকে অংশগ্রহণেরজন্য আমন্ত্রণ জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, ইউএনজিএ-র পাশাপাশি, সমুদ্রসম্মেলনে ভারতকে যোগ দেওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী। ওয়াশিংটন ডিসি-র ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের এক অনুষ্ঠানে রবিবার যোগ দেন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রসফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রীমোদী বলেন, ভারতবাসীরা এখন একদিকে যেমন নতুন নতুন সুযোগের সদ্ব্যবহার করতে পারছেন,অন্যদিকে তেমনই তাঁরা স্বাদ পেয়েছেন এক নতুন পরিবেশেরও। তাঁরা যে অচিরেই ভারতে একযুগান্তকারী পরিবর্তন ঘটাতে চলেছেন, সে বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী তাঁর আস্থা ও দৃঢ়বিশ্বাসের কথা ব্যক্ত করেন। প্রসঙ্গত তিনি উল্লেখ করেন যে গত তিন বছরে কেন্দ্রীয়সরকারের বিরুদ্ধে দুর্নীতির বিন্দুমাত্র অভিযোগ নেই। ভারতের সাম্প্রতিক সার্জিকাল স্ট্রাইকের কথাওতিনি এ প্রসঙ্গে তুলে ধরেন। ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে মানববাহিত মহাকাশযান কর্মসূচির আওতায় যৌথ উদ্যোগ গ্রহণের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্র সম্পর্কে বৃহস্পতিবার (৬ ডিসেম্বর) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে জানানো হয়েছে। এই সফরকালে তিনি রাজ্য সুসংহত সমবায় উন্নয়ন প্রকল্পটির সূচনা করবেন এবং একইসঙ্গে দীনদয়াল উপাধ্যায় কৃষক কল্যাণ প্রকল্পের নির্বাচিত সুফলভোগীদের ঋণ সংক্রান্ত চেক প্রদান করবেন। সুসংহত সমবায় উন্নয়ন প্রকল্পটির লক্ষ্য হল সমবায়, কৃষিক্ষেত্র এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলির বিকাশ ঘটিয়ে উত্তরাখন্ডে দ্রুত গ্রামীণ অর্থনীতির বিকাশ ঘটানো। এই প্রকল্পটি কৃষি এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত মানুষজনকে পর্যাপ্ত সহায়তা দেবার মাধ্যমে উত্তরাখন্ডের পাহাড়ী এলাকা থেকে জোড় করে স্হানান্তরের সম্ভাবনাকে অনেকটাই রোধ করবে। প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পেরই প্রথম কিস্তি হিসেবে উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রীর হাতে ১০০ কোটি টাকার একটি চেক তুলে দেবেন। শ্রী মোদী একইসঙ্গে দীনদয়াল উপাধ্যায় কৃষক কল্যাণ প্রকল্পের নির্বাচিত সুফলভোগীদের মধ্যে ঋণ সংক্রান্ত চেক বন্টন করবেন। প্রসঙ্গত, উত্তরাখন্ড প্রশাসনের এই প্রকল্পের আওতায় ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বহুমুখী ঋণ পাবেন। ২ শতাংশ সুদের হারে কৃষকরা ২০২২-এর মধ্যে উত্তরাখন্ডে কৃষকদের আয় দ্বিগুন করার লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শ্রীলঙ্কারপ্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী রত্নসিরি বিক্রমনায়েক-এর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মুম্বাইতে বাণিজ্যিক কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় মিলিত হন। ভারতীয় অর্থনীতি জগতের ৪১ জন কর্মকর্তা এই সাক্ষাৎকারকালে উপস্থিত ছিলেন। গত চার বছরে কেন্দ্রীয় সরকার গৃহীত নীতিগত সংস্কার প্রচেষ্টা সম্পর্কে দু’ঘন্টারও বেশি সময় ধরে তাঁদের মধ্যে কথাবার্তা হয়। অর্থনৈতিক বিকাশ তথা অগ্রগতিতে শিল্পের অবদান প্রসঙ্গেও আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর এক ‘নতুন ভারত’ গঠনের দৃষ্টিভঙ্গীকেও সমর্থন জানান তাঁরা। শ্রী মোদী স্টার্ট আপ শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে তাঁর সাম্প্রতিক আলোচনা ও মতবিনিময়ের কথা উল্লেখ করেন শিল্প প্রতিনিধিদের কাছে। তিনি বলেন যে, এক ইতিবাচক ও সদর্থক মানসিকতা এবং ‘করে দেখাতে পারি’ এই আত্মবিশ্বাস এখন ভারতে আবার নতুন করে জেগে উঠেছে। কৃষি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও বেশি মাত্রায় বিনিয়োগ করার জন্য কর্পোরেট ক্ষেত্রের কাছে তিনি আর্জি জানান। ভারতরত্ন এম এস শুভলক্ষ্মীর দুই বংশধর এস ঐশ্বর্য এবং এস সুন্দরাইয়া তাঁদেরপিতা-মাতাকে সঙ্গে নিয়ে মঙ্গলবার দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরসঙ্গে। শ্রীমতী ঐশ্বর্য এবং শ্রীমতী সুন্দরাইয়া ‘মৈত্রীম ভজথা’র এক সংক্ষিপ্তপরিবেশন উপস্থাপিত করেন প্রধানমন্ত্রীর সামনে। ১৯৬৬ সালের অক্টোবর মাসেরাষ্ট্রসঙ্ঘে এই ভক্তি সঙ্গীতটি পরিবেশন করেছিলেন এম এস শুভলক্ষ্মী। সংস্কৃতে এররচয়িতা কাঞ্চির আচার্য শ্রী চন্দ্রশেখরেন্দ্র সরস্বতী। মুখ্যমন্ত্রীদের কাছে পাঠানো প্রধানমন্ত্রীর চিঠির সারাংশ :- “আপনি জানেন যে দিন থেকে আমাদের সরকার কার্যভার গ্রহণ করেছে, আমি আমাদের যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা মজবুত করতে ও সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার প্রসারে কাজ করে চলেছি। দেশের জনগণের তাঁদের সরকারের কাছে অনেক প্রত্যাশা রয়েছে এবং তাঁরা আর অপেক্ষা করতে চান না। তাই, একেবারে সূচনাকাল থেকেই বিকাশের দ্রুত ও সার্বিক প্রক্রিয়ার প্রতি আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ থেকেছি। দেশের বৈচিত্র্যতার প্রতি লক্ষ্য রেখে আমরা উপলব্ধি করেছি যে, সামগ্রিকভাবে দ্রুত এই উদ্দেশ্য অর্জনের একমাত্র উপায় হল প্রকৃত ও গতিশীল যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থা । আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, শক্তিশালী রাজ্যই বলিষ্ঠ ভারতের ভিত্তি। মুখ্যমন্ত্রী থাকার সময়েও আমি একথাই বলেছি যে, রাজ্যগুলির অগ্রগতির ওপরই দেশের এগিয়ে যাওয়া নির্ভর করে। তাই, এই সরকার সম্ভাব্য সবরকম উপায়ে রাজ্যগুলিকে ক্ষমতা প্রদান করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমরা এটাও বিশ্বাস করি যে, আর্থিক বিচক্ষণতা ও শৃঙ্খলার বিষয়টিকে নজরে রেখে, রাজ্যগুলিকে আরও বেশি আর্থিক শক্তি ও স্বশাসন দিয়ে নিজেদের কর্মসূচি ও প্রকল্প তৈরি করতে দেওয়া উচিত। আমরা বিশ্বাস করি যে, রাজ্যগুলির এই ক্ষমতা ছাড়া, স্থানীয় উন্নয়নের চাহিদাগুলি পূরণ করা যায় না আর প্রান্তবর্তী সম্প্রদায় ও পিছিয়ে পড়া অঞ্চলকেও তাই মূল ধারায় সামিল করা সম্ভব নয়। এই ধরণের একটি পরিকল্পনা এবং তার বাস্তবায়নে যে পদক্ষেপ আমরা নিয়েছি, তা আমাদের জনগণের উন্নয়নমূলক আশা-আকাঙ্খাগুলি পূরণে সাহায্য করবে। চতুর্দশ অর্থ কমিশন রাজ্যগুলিকে বিভাজ্য সম্পদ ভাণ্ডার থেকে হস্তান্তর ১০ শতাংশ বাড়ানোর সুপারিশ করেছে। বিগত অর্থ কমিশনের সুপারিশ থেকে এই বৃদ্ধির পরিমাণ খুবই সামান্য। ২০১৪ -১৫ – এর তুলনায় ২০১৫-১৬’তে রাজ্যগুলিকে মোট দেয় অর্থ পরিমাণ অনেক বেশি। স্বাভাবিকভাবেই কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে খুব কম অর্থ থাকবে। কিন্তু, এসব সত্ত্বেও আমরা চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশগুলি ইতিবাচক মানসিকতা নিয়ে গ্রহণ করেছি কারণ, এতে আপনার রাজ্যের আর্থিক অবস্থা আরও মজবুত হবে এবং আপনার রাজ্যের অগ্রাধিকার ও চাহিদা অনুযায়ী আপনি প্রকল্প রচনা ও রূপায়ণ করতে পারবেন। চতুর্দশ অর্থ কমিশন তার সুপারিশ রচনার সময় আর্থিক রাজস্ব ব্যয়ের নক্শায় মৌলিক পরিবর্তন করেছে। রাজ্যের পরিকল্পনা রাজস্ব ব্যয়ের জন্য প্রদেয় সমস্ত কেন্দ্রীয় সহায়তাকে রাজ্যের রাজস্ব ব্যয়ের অঙ্গ হিসেবে গণ্য করা হয়েছে এবং এর ভিত্তিতে স্বায়ত্বশাসন নির্ধারণ করা হয়েছে। অর্থ কমিশনের রিপোর্টের ৭.৪৩ নং অনুচ্ছেদে বিষয়টির স্পষ্ট ব্যাখ্যা রয়েছে। অধিকাংশ রাজ্যের পক্ষ থেকেই মত ব্যক্ত করা হয়েছে যে, সম্পদের একটি বিপুল পরিমাণ অংশই কর হস্তান্তর থেকে আসা উচিত এবং সি.এস.এস. – এর সংখ্যা কমানো হোক। সেইহেতু, কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্প ও অনুদানভিত্তিক সহায়তার পরিবর্তে কর হস্তান্তরের লক্ষ্যে পরিবর্তন করা হয়েছে। আর এজন্যই বিভাজ্য সম্পদের ৪২ শতাংশ হস্তান্তরিত করা হচ্ছে। চতুর্দশ অর্থ কমিশন অনুযায়ী, রাজ্যের পরিকল্পনা রাজস্বের সমস্ত খরচ রাজ্যকে প্রদেয় সম্পদ থেকেই পূরণ করা হবে। এত বিপুল পরিমাণ হস্তান্তর সত্ত্বেও আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে, দারিদ্র্য দূরীকরণ, এম.এন.আর.ই.জি.এ., শিক্ষা, স্বাস্থ্য, গ্রামোন্নয়ন, কৃষি সহ আরও কয়েকটি সর্বোচ্চ জাতীয় অগ্রাধিকার প্রাপ্ত থেকে সহায়তা প্রদান বজায় রাখা হবে। আপনি এ বিষয়ে সহমত হবেন যে, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশগুলি গ্রহণ করে, আমরা জটিল কেন্দ্রীয় পরিকল্পনা এবং ‘ওয়ান সাইজ ফিট্স ফর অল’ দৃষ্টিকোণ থেকে সরে আসছি। বিগত বেশ কয়েক বছর ধরেই রাজ্যগুলি কেন্দ্রের এই দৃষ্টিভঙ্গীর বিরোধিতা করে আসছে। আমাদের সিদ্ধান্তে আমরা খুশি যে, ঐ সম্পদ সঠিক জায়গাতেই যাচ্ছে। দারিদ্র্য দূরীকরণে, কর্মসংস্থানের সৃষ্টিতে, আবাসন নির্মাণে, পানীয় জল সরবরাহে, সড়ক, বিদ্যালয় ও হাসপাতাল নির্মাণে এবং বিদ্যুৎ সংযোগ সুনিশ্চিত করতেই রাজ্যগুলিকে অর্থ দেওয়া হচ্ছে। এরকম ঘটনা দেশে আগে কখনও ঘটেনি। এছাড়াও, সম্প্রতি আমরা খনিজ সম্পদের ক্ষেত্রে রয়্যালিটি হার সংশোধন করেছি। আমাদের দেশের অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার ক্ষেত্রে এটি একটি সুবর্ণ সুযোগ। বিশ্বের বিভিন্ন জায়গায় সাম্প্রতিককালে আমার সফরগুলির সময় ভারত’কে নিয়ে ব্যাপক প্রত্যাশা লক্ষ্য করা গেছে এবং বিনিয়োগের আগ্রহও দেখা গেছে। প্রত্যেকেই ভারতের বিকাশের অংশীদার হতে চায়। আমি আশা করি, প্রতিটি রাজ্যই তার প্রধান অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্রগুলির জন্য পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসবে এবং এই লক্ষ্যে সম্পদেরও সংস্থান করবে। প্রকল্প ও কর্মসূচিগুলির জন্য আমাদের একটি কঠোর মূল্যায়ন ব্যবস্থাও গ্রহণ করতে হবে। এই লক্ষ্যে আমি আপনার সঙ্গে কাজ করব। কাজের গুণমান ও তার দ্রুত সম্পাদনের দিক থেকে আমরা একসঙ্গে একটি মাপকাঠি স্থির করব। আসুন, আমরা সকলেই এই লক্ষ্যে কাজ করি। এই লক্ষ্য পূরনে আমি যে কোনও সময়ে পরামর্শের জন্যও প্রস্তুত। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী দু’দিনে দুই রাজ্য, গুজরাট ওতামিলনাডু এবং দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল, দমন ও দিউ এবং পুদুচেরী সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রী দমনে গিয়ে পৌঁছবেন শনিবার। সেখানে তিনি নানা উন্নয়নমূলকপ্রকল্পের সূচনা করবেন এবং বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচিতে সুবিধাপ্রাপকদের হাতেশংসাপত্র তুলে দেবেন। তিনি একটি জনসভাতেও ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী এরপর তামিলনাডু সফরে যাবেন। চেন্নাইতে তিনি আম্মাদ্বিচক্রযান প্রকল্প নামে রাজ্য সরকারের একটি কল্যাণমূলক কর্মসূচির উদ্বোধনঅনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। রবিবার প্রধানমন্ত্রী পুদুচেরী যাবেন। অরবিন্দ আশ্রমে তিনি শ্রী অরবিন্দ’রপ্রতিকৃতিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রী অরবিন্দ আন্তর্জাতিক শিক্ষা কেন্দ্রেরছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে কথা বলবেন। শ্রী মোদী অরোভিল-ও ঘুরে দেখবেন। অরোভিলের স্বর্ণজয়ন্তী উপলক্ষ্যে তিনি একটি স্মারক ডাকটিকিটেরও প্রকাশ করবেন। এই উপলক্ষ্যে তিনিভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী পুদুচেরীতে একটি জনসমাবেশেও ভাষণ দেবেন। রাষ্ট্রপতি ভবনে আয়োজিত রাজ্যপাল সম্মেলনের সমাপ্তি পর্বে আজ ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্মেলনের আলাপ-আলোচনা এবং প্রস্তাব ও পরামর্শ বিনিময়ের উদ্যোগেরও বিশেষ প্রশংসা করেন। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে সংহতি ও সম্প্রীতির বাতাবরণকে আরও উন্নত করে তুলতে নতুন নতুন পথ ও উপায় খুঁজে বের করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও বিশেষ জোর দেন তিনি। রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয়গুলির আচার্য হিসেবে শিক্ষাক্ষেত্রে পঠনপাঠনের মান ও উৎকর্ষ বৃদ্ধিতেও রাজ্যপালদের উদ্যোগী হওয়ার কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট এবং শীর্ষস্থানীয় ১০টি সরকারি ও বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বায়ত্তশাসনের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, সে প্রসঙ্গেরও অবতারণা করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, সাধারণ মানুষের জীবনযাপনকে সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজ্যপালরা জনজীবনে তাঁদের কাজের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই লক্ষ্য পূরণে বিভিন্ন সংস্থা ও কেন্দ্রীয় দপ্তরগুলিকে অঙ্গীকারের সঙ্গে কাজ করে যাওয়ার জন্য উৎসাহিত করতে পারেন। কেন্দ্রীয় সরকারের উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক স্বাস্থ্য কর্মসূচি ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন তিনি। শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, আগামী ২০২২ সালে দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তি এবং ২০১৯-এ মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকী হল এমন দুটি উপলক্ষ যা উন্নয়নের লক্ষ্য ও লক্ষ্যমাত্রা পূরণে উৎসাহ যোগানের ক্ষেত্রে দুটি বিশেষ মাইলফলক। এ বছর জুন মাসে তাসখন্দে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে তাঁর বৈঠকেরকথা স্মরণ করে শ্রী মোদী বলেন, এ মাসের শুরুতে কুড়ানকুলাম পরমাণু বিদ্যুৎপ্রকল্পের ১ নম্বর ইউনিটটি উৎসর্গ করা কালে ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে প্রেসিডেন্টপুতিনের সঙ্গে তাঁর আলোচনা ও মতবিনিময়ের সুযোগ হয়েছিল। এরফলে, ই-ওয়ান গ্রেডের এক্সিকিউটিভদের থেকেও বেশি বেতন ওয়ার্কমেন ও সুপারভাইজাররা পাচ্ছিলেন। এই প্রস্তাবটি নিয়ে এর আগেও বহুবার সচিবদের কমিটি ও মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা করা হয়। কারণ এরফলে কর্মীরা মানসিকভাবে ভেঙে পড়তে পারেন এবং এটি রূপায়ণ করাও সহজ হবেনা। উত্তরাখন্ড ও মেঘালয় হাইকোর্ট উপরোক্ত সিদ্ধান্তটি রদ করে। এছাড়া, এফসিআইএল-এর গোরক্ষপুর এবং সিন্ধ্রির সার কারখানা পুনরুজ্জীবন এবং এইচএফসিএল-এর বারাউনি সার কারখানা পুনরুজ্জীবনের জন্য ছাড় এবং জমি লিজ সংক্রান্ত চুক্তিটির অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। অন্যদিকে, জগদীশপুর-হলদিয়া পাইপলাইনের মাধ্যমে পরিবাহিত গ্যাস এই সার কারখানাগুলিকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করা যাবে। এই উদ্যোগের ফলে দেশের পূর্বাঞ্চলে অর্থনীতি জোরদার হবে এবং এই অঞ্চলে কর্মসংস্হানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এছাড়া, দেশজ ইউরিয়া উৎপাদন বাড়বে ও সার ক্ষেত্রে স্বনির্ভরতা সৃষ্টি হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে নন-ব্যাঙ্কিং আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে (এনবিএফসি) বিদেশী বিনিয়োগে নিয়ন্ত্রণ সংশোধনে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০১৮-র ১৮ এপ্রিল ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে-এর আমন্ত্রনে সেদেশের সরকারের অতিথি হিসাবে ব্রিটেন সফর করেন। আমরা কমনওয়েল্থ রাষ্ট্র জোটের দায়িত্বশীল সদস্য। আমরা এমন এক বিশ্ব দৃষ্টিভঙ্গির অংশীদার যা শক্তি প্রয়োগ বা জোর করে এক তরফাভাবে নিয়মভিত্তিক আন্তর্জাতিক ব্যবস্হাকে পরিবর্তনের বিরোধী। আমরা দুই দেশের মধ্যে অগনিত ব্যক্তিগত ও পেশাগত সম্পর্কের এক জীবন্ত সেতুর অংশীদার। ভারত এবং ব্রিটেন অন্যান্য কমনওয়েল্থভুক্ত রাষ্ট্র, কমনওয়েল্থ সচিবালয় এবং অন্যান্য অংশীদার সংগঠনের সঙ্গে একযোগে বিশ্বের বিভিন্ন সমস্যা মোকাবিলার লক্ষ্যে কাজ করবে। প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্ব ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে প্রযুক্তিগত অংশীদারিত্ব আমাদের যৌথ দৃষ্টিভঙ্গির কেন্দ্রে রয়েছে এবং আজ ও আগামী প্রজন্মের সমৃদ্ধির জন্য এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ এক বিষয়। আমাদের দুই দেশই এক প্রযুক্তি বিপ্লবের সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে আছে। আমরা বিশেষ ধরনের জ্ঞানের অংশীদার হব, গবেষনা ও উদ্ভাবনে সহযোগিতা করব এবং আমাদের বিশ্বমানের উদ্ভাবন ক্লাস্টারগুলির মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবো। আমরা আমাদের নিজস্ব প্রযুক্তিগত শক্তিকে কাজে লাগিয়ে উচ্চমানের কর্ম সংস্হান সৃষ্টি করব, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করবো, বাণিজ্য ও বিনিয়োগে উৎসাহ দেব এবং অভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলি একসাথে মোকাবিলা করবো। আমাদের দুই দেশের ক্রমবর্ধমান দ্বিপাক্ষিক প্রযুক্তি অংশীদারিত্বের অঙ্গ হিসাবে ব্রিটিশ-ভারত প্রযুক্তি হাব গড়ে তোলার জন্য ব্রিটেনের উদ্যোগকে ভারত সরকার স্বাগত জানাচ্ছে। উভয় দেশই বিজ্ঞান, গবেষনা এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে দুই দেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিভাদের কাজে লাগিয়ে বিশ্বের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় উদ্যোগ নিয়েছি। ব্রিটেন হচ্ছে ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম আন্তর্জাতিক গবেষনা এবং উদ্ভাবন অংশীদার দেশ। ভারত ব্রিটেন নিউটন-ভাবা কর্মসূচি যৌথ গবেষনার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে এবং ২০০৮ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে ৪০ কোটি পাউন্ডেরও বেশি মূল্যের উদ্ভাবনমূলক কাজ হবে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং আর্থিক লেনদেন উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ আইনভিত্তিক বহুপাক্ষিক বাণিজ্যিক ব্যবস্হা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্বীকার করেন এবং সুষম বৃ্দ্ধি ও উন্নয়নের স্বার্থে অবাধ ও উন্মুক্ত বাণিজ্যিক লেনদেন বৃদ্ধির গুরুত্ব নিয়েও একমত হন। বিগত ১০ বছরে ব্রিটেন জি-২০ ভুক্ত দেশগুলির মধ্যে বৃহত্তম বিনিয়োগকারি এবং ভারত ব্রিটেনের চতুর্থ বৃহত্তম বিনিয়োগ প্রকল্পের মালিক। আমরা আমাদের অগ্রাধিকার বিষয়ে পারস্পরিক বোঝাপরার ভিত্তিতে বিনিয়োগের জন্য নতুন করে আলাপ-আলোচনা শুরু করবো এবং সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভবিষ্যতের বিভিন্ন ধরনের সুবিধাগুলি পর্যালোচনা করবো। ভারত সরকার এবং ব্রিটিশ সরকারের যৌথ উদ্যোগে ভারতে জাতীয় বিনিয়োগ এবং পরিকাঠামো তহবিলের আওতায় যে গ্রীণ গ্রোথ ইক্যুইটি ফান্ড গড়া হয়েছে তা ভারতের ক্রমবর্ধমান পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিক্ষেত্রে অর্থের ব্যবস্হা করবে। উভয় দেশের পক্ষ থেকে ১২ কোটি পাউন্ড করে দেওয়ার প্রতিশ্রুতি সহ প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে এই তহবিলে মোট ৫০ কোটি পাউন্ডের একটি তহবিল গড়ে তোলা হবে। ২০২২ সালের মধ্যে ভারতে ১৭৫ গিয়াওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের যে লক্ষ্যমাত্রা নেওয়া হয়েছে তা অর্জনে এই তহবিল থেকে আর্থিক সহায়তা পাওয়া যাবে। এছাড়া পরিচ্ছন্ন পরিবহন ব্যবস্হা, জল এবং বর্জ্য পরিচালনের ক্ষেত্রেও এই তহবিল থেকে অর্থ মিলবে। উভয় দেশ নিজেদের মধ্যে ফিন টেক ডায়লগ বা আর্থিক প্রযুক্তি সংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতার জন্য কমিটি গঠনকে স্বাগত জানিয়েছে। আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে দেউলিয়া, পেনশন এবং বিমা সংক্রান্ত বাজার গড়ে তোলার জন্য টেকনিক্যাল সহযোগিতার একটি কর্মসূচি নেওয়া হবে। এবছর উভয় দেশের অর্থমন্ত্রীরা যখন দু দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক এবং আর্থিক পরিষেবা সংক্রান্ত বৈঠকে মিলিত হবেন, এ বিষয়ে আরও সহযোগিতার ক্ষেত্র চিহ্নিত করা হবে। ভারত এবং ব্রিটেন আজকের বিশ্বায়িত পৃথিবীতে যোগাযোগের গুরুত্বকে স্বীকার করে। উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধ লড়ায়ের নেতৃত্বদানের প্রতি তাঁদের প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। আন্তর্জাতিক সৌরজোটের মতো একটি শক্তিজোট গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভারতের সক্রিয় পদক্ষেপকে ব্রিটেন স্বাগত জানিয়েছে। কমনওয়েল্থ রাষ্ট্রপ্রধানদের শীর্ষ বৈঠকের সপ্তাহে দু দেশের সরকারের সহযোগিতায় লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ এবং আন্তর্জাতিক সৌরজোটের মধ্যে সফল বৈঠকে উভয় দেশই সন্তোষ ব্যক্ত করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে আন্তর্জাতিক সৌরজোটভুক্ত দেশগুলিতে সৌরশক্তির প্রসারের লক্ষ্যে ১ লক্ষ কোটি ডলার বিনিয়োগের ব্যবস্হা করতে লন্ডন স্টক এক্সচেঞ্জ বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে উল্লেখ করা হয়েছে। গতিশীল গণতন্ত্র হিসাবে আমরা একটি নিয়মবদ্ধ আন্তর্জাতিক ব্যবস্হাকে সমর্থন করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার আগ্রহ প্রকাশ করেছি। এই অনিশ্চিত পৃথিবীতে ভারত এবং ব্রিটেন যৌথভাবে এক শুভ শক্তি হিসাবে কাজ করতে পারে। বিভিন্ন ধরনের আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আমরা আমাদের অভিজ্ঞতা এবং জ্ঞানকে ভাগ করে নিতে চায়। অন্যদিকে ব্রিটেনের প্রাকৃতিক পরিবেশ গবেষনা পরিষদ এবং ভারতের জৈব প্রযুক্তি দপ্তর যৌথভাবে একটি সুষম বিশ্ব নামে উদ্যোগ গড়ে তুলতে চায়, যার মাধ্যমে সুষম এবং স্হায়ী মানবিক উন্নয়নের জন্য অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গবেষনা এবং উদ্ভাবনের কাজ চালানো হবে। ২০৩০ সালের মধ্যে সমগ্র বিশ্ব থেকে অপরিসীম দারিদ্রকে সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলতে বিশ্বের উন্নয়নের কাজে আমরা আমাদের অংশীদারিত্বকে আরও জোরদার করে তুলবো। যতোগুলি দেশে সম্ভব, আমরা আর্থিক সহায়তা, নতুন বাজারের ব্যবস্হা, বাণিজ্য বিনিয়োগ, যোগাযোগ এবং অর্থনৈতিক সংহতির ক্ষেত্রে আমরা সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেব। প্রতিরক্ষা এবং সাইবার নিরাপত্তা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে এই ধরনের সমস্যা মোকাবিলায় আমরা নতুন প্রযুক্তি উদ্ভাবন করবো এবং আমাদের দুই দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে এই প্রযুক্তি, দক্ষতা এবং যন্ত্রপাতি ভাগ করে নেব। ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলটি নিরাপদমুক্ত অন্তর্ভুক্ত এবং সমৃদ্ধ হয়ে উঠলে তা যে কেবলমাত্র ভারত ও ব্রিটেনের স্বার্থরক্ষা করবে তাই নয়, এর ফলে আর্ন্তজাতিক গোষ্ঠীরও স্বার্থ সুরক্ষিত হবে। ভারত এবং ব্রিটেন এই অঞ্চলটিতে জলদস্যুতা প্রতিরোধ, জাহাজ চলাচলের স্বাধীনতা এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে একযোগে কাজ করবে। উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ পুনরায় যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদের তীব্র নিন্দা করেন এবং ভারত ও ব্রিটেনে এই ধরনের সন্ত্রাসমূলক তৎপরতার বিরুদ্ধে কার্যকর ব্যবস্হা গ্রহন বিষয়ে একমত হন। সালিসবেরিতে যে ভয়ানক রাসায়নিক নার্ভ এজেন্ট ব্যবহার করে হামলা চালানো হয়েছে, তারই প্রেক্ষিতে ভারত এবং ব্রিটেন রাসায়নিক অস্ত্রশস্ত্রের প্রসার ও ব্যবহারের বিরুদ্ধে নিরস্ত্রীকরণ ও প্রসার প্রতিরোধ ব্যবস্হাকে শক্তিশালী করে তোলার বিষয়ে উভয় দেশই একমত হয়েছে। সিরিয়ায় রাসায়নিক অস্ত্রশস্ত্র ব্যবহারের বিরুদ্ধে উভয় দেশ গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। বিশ্বের যে কোনও স্হানে, যে কোনও ভাবে, যে কোনও সময়ে এবং যে কোনও পরিস্হিতিতে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের তীব্র বিরোধীতা করে উভয় দেশ আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র প্রতিরোধ সংক্রান্ত চুক্তিকে যথাযথভাবে রূপায়নের ওপর জোর দিয়েছে। রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের যে কোনোও ধরনের ঘটনার বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক রাসায়নিক অস্ত্র প্রতিরোধ চুক্তির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জরুরি ভিত্তিতে তদন্তের ওপরেও উভয় দেশ জোর দিয়েছে। আমরা যেসব বিষয় এবং ক্ষেত্রে দক্ষতা এবং সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলে উভয় দেশের সমৃদ্ধি সুনিশ্চিত হবে, সেইসব ক্ষেত্রে শ্রেষ্ঠ এবং উজ্জ্বল ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা ও কাজ করার বিষয়টি স্বাগত জানায়। ২০১৭ সালে ভারত-ব্রিটেন সংস্কৃতি বর্ষ উদযাপনের সাফল্যে উভয় নেতাই সন্তোষ ব্যক্ত করেন। এক বছর ব্যাপি এই বর্ষ উদযাপন অনুষ্ঠানে নজিরবিহীনভাবে দু দেশের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে বিনিময়ের এবং শিল্পকলা, সাংস্কৃতিক ও সাহিত্যিক ঐতিহ্যকে তুলে ধরার সুযোগ এসেছিল বলে দু দেশের নেতৃবৃন্দ উল্লেখ করেছেন। উভয় নেতায় ভারতের ব্রিটিশ কাউন্সিলে ৭০তম বর্ষ উদযাপন এবং শিক্ষক প্রশিক্ষণ, যুবকদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি ও সাংস্কৃতিক বিনিময়ের ক্ষেত্রে এই সংগঠনের ভূমিকাকে স্বাগত জানিয়েছে। উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ মনে করেন, দুই দেশের মানুষের মধ্যে সচল সেতুবন্ধের মাধ্যমেই ভারত ও ব্রিটেনের পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে যোগাযোগ ও বিনিময়ের আশা নিহিত রয়েছে। এই জীবন্ত সেতুবন্ধকে উভয় নেতায় উৎসাহিত এবং সমর্থন করতে রাজি হয়েছেন। আমরা আমাদের এই কৌশলগত অংশীদারিত্বকে, যা বিশ্বব্যাপি শতাব্দী জুড়ে ছড়িয়ে আছে, আগামী দিনে আরও বেশি করে উজ্জীবিত করার জন্য দৃঢ় সংকল্প। নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবারবৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের (ভি.ই.টি.) ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য ভারত ওবেলারুশের মধ্যে সমঝোতা স্মারকে (মউ) এক্স-ফ্যাক্টো অনুমোদন দিল| এই মউ বেলারুশেররাষ্ট্রপতি মহামান্য শ্রী আলেকজান্ডার লুকাশেঙ্কো’র ভারত সফরের সময় গত ১২সেপ্টেম্বর (২০১৭) স্বাক্ষরিত হয়েছিল| কোনোইউরেশিয়ান দেশের সঙ্গে বৃত্তিমূলক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রেসহযোগিতার জন্য এটাই প্রথম মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে| ও এর দীর্ঘস্থায়িত্ব নিয়ে প্রযুক্তিহস্তান্তরের জন্য প্রশিক্ষণের মহানির্দেশক| বেলারুশের বিভিন্ন ক্ষেত্রের ভি.ই.টি./উত্কর্ষ কেন্দ্রকে দক্ষতা বাস্তুতন্ত্রের উন্নয়ন ও গবেষণার জন্য প্রস্তাবিত করাহয়েছে| এক্ষেত্রেসহযোগিতা বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলি হচ্ছে নিম্নরূপ: ১.উন্নত প্রযুক্তি, প্রশিক্ষণ ও মূল্যায়ন পদ্ধতি, নিয়মিত ও দূরশিক্ষার বিষয়সূচিরউন্নয়ন, ই-শিক্ষা, মাস্টার ট্রেনারদের প্রশিক্ষণ, যোগ্যতা তৈরি, নেটওয়ার্ক তৈরিকরা ও শিল্প সংযোগের ক্ষেত্রে তাদের ব্যবহারিক জ্ঞান প্রদান করবে বেলারুশ পক্ষ| ২.ভারতীয় নাগরিকদের দক্ষতা উন্নয়নের জন্য বৃত্তিমূলক শিক্ষা| এক্ষেত্রে যেসব বিষয়রয়েছে সেগুলো হচ্ছে, নির্মাণ, বিদ্যুত উত্পাদন ও সরবরাহ, নির্মাণ শিল্প, ব্যবসা,অটো সার্ভিস, গৃহস্থালীর সামগ্রী মেরামত ও রক্ষণাবেক্ষণ, পরিবহন, যোগাযোগ, হোটেল ওরেস্তোরাঁ এবং ভারতে অন্যান্য যেসব ক্ষেত্রে বেশি আগ্রহ রয়েছে| ৩.বেলারুশের পক্ষ থেকে বৃত্তিমূলক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ পরিচালনা, শিক্ষক ওপ্রশিক্ষকের জন্য পুনর্প্রশিক্ষণ, দক্ষতা উন্নয়ন ও ইন্টার্নশিপ| ৪.বৃত্তিমূলক শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও দক্ষতা উন্নয়ন প্রদানের জন্য উপদেষ্টা পরিষেবা,পরিকল্পনা ও পরিচালনা| *এই মউ দেশের দক্ষতার বাস্তুতন্ত্রের সার্বিক উন্নয়নের জন্য বেলারুশেরঅভিজ্ঞতা ও জ্ঞানকে নিয়ে আসবে| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ইকনোমিক টাইমস গ্লোবাল বিজনেস সামিট-এ ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৩-১৪-য় যখন মুদ্রাস্ফীতি, আর্থিক ঘাটতি এবং পলিসি প্যারালিসিস-এর মতো সমস্যায় জর্জরিত ছিল দেশ, তখন থেকে এখন পর্যন্ত পরিবর্তন স্বচ্ছভাবে দৃশ্যমান। দ্বিধার পরিবর্তে এসেছে আশা এবং বাধা-বিপত্তিকে সরিয়ে এসেছে আশাবাদ, বলেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৪ সাল থেকে ভারত সব ধরণের আন্তর্জাতিক রেটিং এবং সূচকে গুরুত্বপূর্ণভাবে এগিয়েছে। এই প্রেক্ষিতে ২০১৪-র আগে এবং বর্তমান সময়ে বিভিন্ন ধরণের প্রতিযোগিতার মধ্যে যে পার্থক্য প্রকট ছিল সে বিষয়ে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন অসম্ভব সম্ভব হয়েছে। বিগত চার বছরে প্রত্যক্ষ্য বিদেশী বিনিয়োগের যে পরিমাণ লক্ষ্য করা গেছে তা ২০১৪-র আগে ৭ বছরে যা হয়েছিল তার সমান। এরজন্য প্রয়োজন ছিল সংস্কারগুলির রূপান্তর। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেওলিয়া আইন, জিএসটি, রিয়্যাল এস্টেট আইনের মাধ্যমে বৃদ্ধি বাড়ানোর ভিত গড়া গিয়েছে। শ্রী মোদী আরও বলেন, ভারত ১৩০ কোটি জনসংখ্যার দেশ এবং এক্ষেত্রে বিকাশ এবং প্রগতির জন্য কোনও একটি স্বপ্ন নেই। আমাদের নতুন ভারতের স্বপ্ন এরকমই যেখানে সমাজের প্রত্যেক সম্প্রদায়ের মানুষের চাহিদা চরিতার্থ করার কাজ করা হবে বলে শ্রী মোদী ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, আমরা যে নতুন ভারত গড়ার স্বপ্ন দেখছি তার মধ্যে রয়েছে আগামী দিনগুলির সমস্যা নিরসন করা এবং একইসঙ্গে অতীতের সমস্যাগুলিরও যথাযথ সমাধানের ব্যবস্হা করা। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি উদাহরণ দেন। · ভারত যখন দ্রুত গতিতে আইআইটি এবং এইমস গড়ে তুলছে তখন সারা দেশে সমস্ত বিদ্যালয়ে শৌচালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার ১২ কোটি ছোট এবং প্রান্তিক চাষির কাছে পৌঁছে গিয়েছে যাদের তাঁদের প্রত্যেক বছর ৬০০০ টাকা করে দেওয়া যায়। এরফলে, আমাদের কৃষকদের কাছে আগামী ১০ বছরে ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকা পৌঁছে যাবে। শ্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।একবার্তায় তিনি বলেন : প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পাঠান কোটে সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের নিন্দা করে বলেছেন, মানবতার শ্ত্রুরা দেশের সাফল্যে ঈর্ষান্বিত হয়ে ভারতীয় সশস্ত্র সেনার ওপর আক্রমণ হেনেছে। ওই সন্ত্রাসবাদী আক্রমণের নকশাকে পরাভূত করার জন্যে স্যালুট জানিয়ে তিনি এই অপারেশনে শহীদ হওয়া সৈনিকদের আন্তরিক শ্রদ্ধা জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিয়েতনাম সফরে যাচ্ছেন। ভিয়েতনাম হল বন্ধুরাষ্ট্র, যার সঙ্গে আমরা আমাদেরসম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। এই সফরের সময় আমি সেদেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রী ন্‌গুয়েনজুয়ান ফুক-এর সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করব। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পূর্ণদিগন্তই খতিয়ে দেখা হবে। আমি ভিয়েতনামের রাষ্ট্রপতি শ্রী ত্রান দাই কোয়াং,ভিয়েতনামের কমিউনিস্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক শ্রী ন্‌গুয়েন ফু ত্রং এবং সেদেশেরজাতীয় আইনসভার অধ্যক্ষ শ্রীমতী ন্‌গুয়েন থি কিম ন্‌গান-এর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করব। আমরা ভিয়েতনামের সঙ্গে এমন এক বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্কগড়ে তুলতে চাই, যা দু’দেশের নাগরিকদের পক্ষেই পারস্পরিক কল্যাণপ্রদ হয়। আমারভিয়েতনাম সফরের সময়ে দু’দেশের মানুষে-মানুষে যোগাযোগ বাড়ানোর দিকেই আমার চেষ্টাথাকবে। ভিয়েতনামে আমার বিংশ শতাব্দীর অন্যতম শ্রেষ্ঠ নেতা হো চিমিন-এর প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর সুযোগ ঘটবে। আমি সেখানে কোয়ান সু প্যাগোডা দর্শনছাড়াও জাতীয় বীর ও শহীদদের স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করব। আমি চিনের হ্যাংঝাউ-তে জি-২০ বার্ষিক শীর্ষ বৈঠক উপলক্ষে৩ থেকে ৫ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত থাকব। ভিয়েতনামে এক গুরুত্বপূর্ণ দ্বিপাক্ষিক সফরশেষে আমি হ্যাংঝাউ-তে পৌঁছব। জি-২০ শীর্ষ বৈঠকের সময়ে আমার বিশ্বের অন্য নেতৃবৃন্দেরসঙ্গে আন্তর্জাতিক অগ্রাধিকারমূলক বিষয়ে এবং উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলির বিষয়ে কথা বলারসুযোগ ঘটবে। বিশ্ব অর্থনীতিকে সুস্থায়ী ও সুদৃঢ় বৃদ্ধির পথে স্থাপন করতে এবংসামাজিক সুরক্ষা ও অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলার জন্য বিভিন্ন পন্থাপদ্ধতিনিয়েও আমরা আলোচনা করব। ভারত আমাদের সামনের সমস্ত বিষয়গুলি নিয়ে গঠনাত্মক আলোচনাকরবে এবং সুস্থায়ী, বলিষ্ঠ ও সার্বিক আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে তোলারজন্য আলোচ্যসূচি এগিয়ে নিয়ে যেতে কাজ করে যাবে, যাতে বিশ্ব জুড়ে মানুষেরআর্থ-সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটে, বিশেষ করে তাদের, উন্নয়নশীল দেশে যেসব মানুষদেরএটা সবথেকে বেশি প্রয়োজন। নিউডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট, ব্রিক্‌সবাণিজ্য পরিষদের সদস্যবৃন্দ, যেঅংশীদারিত্বের সম্পর্ক আপনারা গড়ে তুলেছেন এবং যে নেটওয়ার্কগুলির আপনারা সূচনাকরেছেন তা ব্রিক্‌সভুক্ত প্রত্যেকটি সদস্য রাষ্ট্রের অর্থনৈতিক বিকাশ প্রচেষ্টায়বিশেষভাবে শক্তি যুগিয়েছে। মাননীয়নেতৃবৃন্দ এবং বন্ধুগণ, বাণিজ্যিককাজকর্মকে সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সূচকে ভারতের ক্রম-উত্থান ঘটেচলেছে। একইভাবে, আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামুখিনতার সূচক অনুযায়ী ৩২টি স্থানইতিমধ্যেই আমরা অতিক্রম করে এসেছি। এবছর জুলাই মাসে চালু হওয়া পণ্য ও পরিষেবা করএযাবৎকালের মধ্যে ভারতের এক বৃহত্তম সংস্কার প্রচেষ্টা। একটিমাত্র প্রচেষ্টারমাধ্যমেই ১৩০ কোটি জনসাধারণের জন্য গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে এক অভিন্ন বিপণনব্যবস্থা। ডিজিটাল ভারত, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া এবং মেক ইন ইন্ডিয়ার মতোকর্মসূচিগুলি দেশের অর্থনৈতিক প্রেক্ষাপটেক্রমশ পরিবর্তন ঘটিয়ে চলেছে। জ্ঞান ওদক্ষতা-নির্ভর প্রযুক্তিচালিত এক সমাজ ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজে তা ভারতকে নানাভাবেসাহায্য করছে। বাণিজ্য ওবিনিয়োগ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা, দক্ষতা বিকাশ, পরিকাঠামো উন্নয়ন, ক্ষুদ্র ওমাঝারি শিল্পবিকাশ প্রচেষ্টা এবং বৈদ্যুতিন বাণিজ্য ও ডিজিটাল অর্থনীতির প্রসারেরমতো ক্ষেত্রগুলিকে ব্রিক্‌স বাণিজ্য পরিষদ যে বিশেষভাবে অগ্রাধিকার দিয়েছে তা জেনেআমি আনন্দিত। আপনাদের বক্তব্য ও আলোচনা থেকে রূপায়ণযোগ্য বহু সুপারিশই আমরা লাভকরেছি। একটি ব্রিক্‌স রেটিং এজেন্সি গঠন, শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, সবুজ অর্থনীতিএবং ডিজিটাল অর্থনীতি প্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে আপনাদের কর্মপ্রচেষ্টা বিশেষভাবে উল্লেখকরার মতো। আপনাদের এই প্রচেষ্টায় সবক’টি সদস্য রাষ্ট্রের কাছ থেকে সরকারিভাবেআপনারা যে পূর্ণ সমর্থন লাভ করবেন একথা ঘোষণা করার মাধ্যমে আমি আমার বক্তব্য শেষকরতে আগ্রহী। অভিনন্দনজানাই প্রত্যেককেই। শ্রী রামকৃষ্ণবচনামৃত সম্মেলনের সাতদিনের এই অনুষ্ঠানে আপনাদের মধ্যে উপস্থিত হওয়ার সৌভাগ্যআমার ঘটেছে। ‘এক ভারত …শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর থেকে আর বড় উদাহরণ কি হতে পারে? প্রাচীন পুঁথি-পত্রএবং মহৎ গুরুর বাণী ও শিক্ষাদর্শকে অনুসরণ করেই এক সুদীর্ঘ ঐতিহ্যকে পালন করেআসছেন আপনারা। এই ঐতিহ্যের সূচনাশ্রুতি থেকে স্মৃতি পর্যন্ত ব্যাপ্ত প্রসারিত। শ্রুতি হল এমনইএকটি বিষয় যা মৌখিক বাণীর মাধ্যমে ঐশ্বরিক জ্ঞানের প্রতিফলন ঘটায়। আর স্মৃতি হলশ্রেণীকক্ষে পাঠ করা এমন কিছু বিষয় যা আমাদের স্মরণশক্তি ও প্রকাশ ক্ষমতার ওপরনির্ভরশীল। সাধু-সন্তদের বাণী ও বার্তাকে আরও বহন করে নিয়ে গেছেন সঙ্গীত শিল্পী, কথকশিল্পী এবং চারণ কবিরা। কবীরের দোহা এবং মীরার ভজন কন্ঠে নিয়ে গায়করা অতিক্রম করে গেছেন এক গ্রামথেকে অন্য গ্রাম। ভারত হল বহুমূল্য সংস্কৃতিও মেধাসম্পদে সমৃদ্ধ একটি দেশ। আমাদের মাতৃভূমি জন্মদিয়েছেন বহু লেখক, বিদগ্ধজন, সাধু-সন্ত ও ফকিরদের। মানব সভ্যতারইতিহাস যখনই প্রবেশ করেছে জ্ঞানের রাজ্যে, তাকে পথ প্রদর্শন করে এগিয়ে নিয়ে গেছেভারত। বিদেশিদেরসামাজিক, রাজনৈতিক এবং অর্থনৈতিক সংস্কার প্রচেষ্টার এক সময় খুবই প্রয়োজন দেখাদিয়েছিল ভারতে, একথা আজ মিথ্যা বলে প্রমাণিত হয়েছে। এই পরিবর্তনেরসূচনা হয়েছে মানুষের অন্তর থেকে যার পথিকৃৎ ছিলেন আমাদের সাধু-সন্ত ও ফকিররা।সামাজিক রূপান্তরই ছিল তাঁদের জীবনের ব্রত। দেশের কাউকেইতাঁদের এই লক্ষ্যের বাইরে তাঁরা ফেলে যাননি। আর এই কারণেইআমাদের সভ্যতা সমস্ত বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে আজও স্বমহিমায় সমান সাবলীল। যুগ বা সময়েরপরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গেই কিন্তু এই সভ্যতার বিনাশ ঘটেনি। বরং, বহু শতক ধরেচলে আসা প্রথা ও ধ্যান-ধারণাকে আমূল বদলে দিতে পেরেছি আমরা। নতুন নতুনচিন্তাভাবনাকে সর্বদাই আমরা স্বাগত জানিয়েছি। কোন বিশেষসংস্কৃতি বা ধর্ম বিশ্বাস গড়ে ওঠার বহু পূর্বেই এ দেশে লিঙ্গ সমতার কথা প্রচার করেগেছেন সাধ্বী রমণীরা। তাঁরা নির্ভীকভাবেএই মত ব্যক্ত করে গেছেন তাঁদের বলিষ্ঠ লেখনীর মাধ্যমে। হিন্দুদার্শনিকতায় কাল বা সময়কে মহাবিশ্বের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।কাল ও সময়ের ব্যবধানে আমরা হয়ে উঠেছি দিক-কাল-বাধিত। পুঁথি-পত্রেউল্লেখ রয়েছে : যাঁরা তোমাকেঅনুপ্রাণিত করেন, যাঁদের দেওয়া তথ্যের আলোকে তুমি উদ্ভাসিত হও, যাঁরা তোমায় প্রকৃতসত্যের উদঘাটনে সাহায্য করেন, যাঁদের শিক্ষাদর্শ হয়ে ওঠে তোমার জীবনের পাথেয়,যাঁরা তোমায় সঠিকভাবে পথনির্দেশ করেন, তোমার সুপ্ত আত্মাকে জাগ্রত করে তোলেন,তাঁরাই হলেন তোমার প্রকৃত গুরু। কেরলের রূপান্তরপ্রক্রিয়ায় শ্রী নারায়ণ গুরুর ভূমিকা ও অবদানের কথা আমরা আজও স্মরণ করি। এক অনগ্রসরবর্ণোদ্ভূত হয়েও এই সাধুপুরুষ জাতি-ধর্মের সীমারেখা অতিক্রম করে উত্তরণ ঘটিয়েছিলেনসামাজিক ন্যায়ের। শিবগিরিতীর্থযাত্রার যখন সূচনা হয়, তিনি ঘোষণা করেছিলেন যে এর লক্ষ্য হল শিক্ষা,স্বচ্ছতা, ভগবদ প্রেম, সমাজবদ্ধতা, কৃষি, বাণিজ্য, হস্তশিল্প এবং কারিগরিপ্রশিক্ষণ ও অনুশীলনের ক্রমপ্রসার। সামাজিক অগ্রগতিরক্ষেত্রে একজন শিক্ষকের এর থেকে বড় অবদান আর কিই বা হতে পারে? এই সমাবেশেশ্রীরামকৃষ্ণ সম্পর্কে কিছু বক্তব্য পেশ করা হয়তো নিছক বাতুলতা বলে মনে হতে পারে,কিন্তু যে সমস্ত বিষয় তাঁকে আজও সমান প্রাসঙ্গিক করে তুলেছে সেগুলি উল্লেখ করারবাসনা থেকে আমি নিজেকে মুক্ত করতে পারছি না। ঐতিহ্যকে এক নতুন কলেবরদিয়েছিলেন তিনি এবং তাকে করে তুলেছিলেন অনেক অনেক বলিষ্ঠ। তিনি ছিলেন সামাজিকসম্প্রীতির এক মূর্ত প্রতীক। জ্ঞানীদের কাছে যিনিনিরাকার ব্রহ্ম বলে পরিচিত, তিনিই আবার এক অভিন্ন আত্মার প্রতিরূপ যোগীদের কাছে।অন্যদিকে ভক্তরা তাঁকে বন্দনা করেন একান্ত ঈশ্বর ভগবান রূপে। আর কেরলে আপনারাজলকে বলেন ‘ভেল্লাম’। মহাত্মা গান্ধীবলেছিলেন যে ঈশ্বরকে কিভাবে কাছে পাওয়া যায় তা আমরা শিখেছি রামকৃষ্ণের জীবন থেকে। ঈশ্বরই একমাত্রসত্য, বাকি সবকিছুই মায়া – একথায় যাঁরা বিশ্বাস করেন না, তাঁরা কখনই তাঁর জীবনদর্শনের সন্ধান পেতে পারেন না। প্রাচীনত্বেরসঙ্গে আধুনিকতার মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন শ্রীরামকৃষ্ণ। আধুনিকতার মধ্যেজীবনযাপন করেও সুপ্রাচীন আদর্শ ও অভিজ্ঞতাকে কিভাবে উপলব্ধি করা সম্ভব, তা দেখিয়েগেছেন তিনি। খুব সহজ-সরল ভাষায়গল্পের ছলে কিংবা বোধগম্য ভাষার বার্তার মধ্য দিয়ে তিনি সেই পথের অনুসন্ধান দিয়েগেছেন। সহজ সারল্যের জন্যএ সমস্ত কিছুই অক্ষয়, অব্যয় হয়ে রয়েছে শ্রোতাদের মানসপটে। তাঁর মতো শিক্ষকযদি আমরা না পেতাম, তাহলে স্বামী বিবেকানন্দের মতো একজন শিষ্যেরও আমরা দেখা পেতামনা। গুরুরচিন্তাদর্শকে আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছিলেন এই মহান কর্মযোগী – যত্র জীব, তত্র শিব – যেখানেই রয়েছে প্রাণের সন্ধান, সেখানেই অবস্থান শিবের; জীবে দয়া নয়, শিব জ্ঞানে জীব সেবা – প্রাণীদের প্রতি দয়া বা অনুকম্পা নয়, বরং তাদের সেবাকরতে হবে শিব জ্ঞানে। দরিদ্র নারায়ণেরসেবা করে যেতে আজীবন। স্বামী বিবেকানন্দবলতেন … ছাড়ি কোথা খুঁজিছ ঈশ্বর? যাঁরা দরিদ্র,অসহায় এবং দুর্বল তাঁরা কি ঈশ্বর নয়? তাহলে তাঁদেরই প্রথম পুজো করো না কেন? এঁরাইহলেন তোমার প্রকৃত ঈশ্বর। তাঁর এই অঙ্গীকারও প্রতিশ্রুতি প্রতিফলিত হয়েছে রামকৃষ্ণ মিশনের সেবা কাজের মধ্য দিয়ে। যা সবথেকে বেশিগুরুত্বপূর্ণ তা হল নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে তাঁকে কোনভাবে সাহায্য করা যায় কিনাসেকথা চিন্তা করা। মিশনের ওয়েবসাইটে ব্যক্তির মুক্তিবিশ্বের কল্যাণে। এই উপলক্ষে বিখ্যাত ক্যাপিটল কমপ্লেক্সে সমবেত উৎসাহী অংশগ্রহণকারীদের উদ্দেশে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আজ পৃথিবীর সর্বত্র যোগাভ্যাস ও যোগ অনুশীলনের মাধ্যমে বিশ্ববাসী একত্রিত হলেন। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপনের বিষয়টিকে যে তাঁরা মনে-প্রাণে গ্রহণ করে সোৎসাহে এগিয়ে এসেছেন, এই ঘটনা তারই প্রমাণ। সমাজের সকল স্তরের মানুষ আজ ঐক্যবদ্ধ হয়েছেন এক সমবেত প্রচেষ্টার মাধ্যমে। তিনি বলেন, যোগানুশীলনকে যাঁরা জনপ্রিয় করে তোলার লক্ষ্যে পরিশ্রম করে চলেছেন, তাঁদের সম্মানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে একটি করে পুরস্কারের ব্যবস্থা করা হবে। তিনি ছিলেন বিশেষভাবে প্রশংসিত একসঙ্গীতবিদ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার (১৫ জুলাই, ২০১৮) মির্জাপুরে বানসাগর সেচখাল প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। এই প্রকল্পটি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের কৃষিসেচের ক্ষেত্রে বড় ভূমিকা নেবে, সেইসঙ্গে এলাহাবাদ ও মির্জাপুর জেলার কৃষকরাও ব্যাপক উপকৃত হবেন। শ্রী নরেন্দ্র মোদী মির্জাপুর মেডিকেল কলেজেরও শিলান্যাস করেন। তিনি রাজ্যে ১০০টি জন ওষধি কেন্দ্রের উদ্বোধন করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মির্জাপুর অঞ্চলের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। মির্জাপুরে তাঁর শেষ সফরের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফরাসী রাষ্ট্রপতি মিঃ মাকরঁ-এর সঙ্গে তিনি সৌরবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উদ্বোধনে এখানে এসেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বিগত দু’দিনে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প ও কর্মসূচির উদ্বোধন তথা শিলান্যাসের কথাও উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ২০১৪-র পর প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিচাঁই যোজনার অঙ্গ হিসাবে এই প্রকল্পটিকে গ্রহণ করা এবং এর কাজ শেষ করতে সর্বাত্মক প্রয়াস নেওয়া হয়। কেন্দ্রীয় সরকার কৃষক কল্যাণে যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে সে বিষয়ে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী খরিফ ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্যে সাম্প্রতিক বৃদ্ধির কথাও জানান। তিনি, গরিব মানুষের সুলভ মূল্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে জন ওষধি কেন্দ্রের সুবিধার কথা তুলে ধরেন। তিনি বলেন, রোগ নিয়ন্ত্রণে স্বচ্ছ ভারত মিশন গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে। স্বাস্থ্য নিশ্চয়তা প্রকল্প – আয়ুষ্মান ভারত শীঘ্রই শুরু হবে বলেও তিনি জানান। অসমেরগোগামুখে ভারতীয় কৃষি গবেষণা সংস্থার (আইএআরআই) আজ শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে এক জনসমাবেশে ভাষণদানকালে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীসর্বানন্দ সোনোয়াল এবং তাঁর সরকারের উন্নয়ন প্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি।অভিনন্দন জানান মুখ্যমন্ত্রী সোনোয়াল এবং তাঁর মন্ত্রিসভার সহকর্মীদের। প্রধানমন্ত্রীতাঁর ভাষণে বলেন, ভারতীয় কৃষি গবেষণা সংস্থার যে শিলান্যাস আজ অনুষ্ঠিত হল তাসমগ্র অঞ্চলের ইতিবাচক ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সম্ভাবনাপূর্ণ। শ্রীমোদী বলেন, একুশ শতকের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে কৃষির উন্নয়ন সম্ভব করে তোলাপ্রয়োজন। পরিবর্তনশীল প্রযুক্তির সুফল কৃষকদের কাছে পৌঁছে দেওয়া উচিৎ বলে মনে করেনতিনি। সংশ্লিষ্টঅঞ্চলের সুনির্দিষ্ট চাহিদা ও প্রয়োজনের কথা মনে রেখে আধুনিক কৃষি পদ্ধতি ওপ্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গড়ে তোলার ওপর বিশেষ জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাধীনতার ৭৫তমবার্ষিকী অর্থাৎ, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে কৃষিজীবী মানুষের আয় ও উপার্জন দ্বিগুণকরে তোলার লক্ষ্যে তাঁর চিন্তাভাবনার কথাও ব্যক্ত করেন তিনি। শ্রীমোদী বলেন, গত তিন বছরে কৃষককল্যাণে বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেকেন্দ্রীয় সরকার। প্রসঙ্গত ‘সয়েল হেল্‌থ কার্ড’, ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিচাঁইযোজনা’ এবং ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’র কথা উল্লেখ করেন তিনি। সারা দেশেমাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য গবেষণাগারের যে বিশাল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে সেকথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফসল বিমা যোজনা কৃষকদের মধ্যে ক্রমশজনপ্রিয় হয়ে উঠছে। দেশেরউত্তর-পূর্বাঞ্চলে সংযোগ ও যোগাযোগের প্রসারে ‘পঞ্চ তত্ত্ব’ ব্যাখ্যা করেনপ্রধানমন্ত্রী। “আম্বেদকর জয়ন্তীতে সকলকে অভিনন্দন জানাই। সমাজের দরিদ্রতম ও প্রান্তিক স্তরের লক্ষ লক্ষ মানুষের মনে আশা জাগিয়ে তুলেছিলেন পূজ্য বাবাসাহেব। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শুক্রবার সাক্ষাত করলেন গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী লি ওয়ানচাও| সাক্ষাতকারকালে প্রধানমন্ত্রী গত বছর চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিন পিঙের ভারত সফর এবং এবছর মে মাসে তাঁর চিন সফরের কথা গভীর আগ্রহের সাথে স্মরণ করেন| মহানদীর জল নিয়েবিবাদ-বিতর্কের অবসান ঘটাতে একটি ট্রাইব্যুনাল গঠনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিলকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিতমন্ত্রিসভার এক বৈঠকে আজ সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মধ্যে জলের ভাগ-বাঁটোয়ারা নিয়েবিবাদ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে এই ট্রাইব্যুনাল গঠনের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। জলবন্টনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির অবদান, মোট জলের পরিমাণ এবং প্রত্যেকটিরাজ্যের জলসম্পদ ব্যবহারেরবর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবে প্রস্তাবিত এইট্রাইব্যুনালটি। এছাড়াও, জলসম্পদের বিকাশ কিভাবে বাস্তবায়িত করা যায়, সে সম্পর্কেওচিন্তাভাবনা করবে এই ট্রাইব্যুনাল। চতুর্দশভারত-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন শিখর সম্মেলনে রাষ্ট্রপতি টুস্ক এবং রাষ্ট্রপতি জাংকারকেস্বাগত জানানোর সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত| আমাদের বহু-বিস্তৃত বিষয় নিয়ে আজ আমরা যে ফলপ্রসূ আলোচনা করলাম, তার জন্যআমি রাষ্ট্রপতি টুস্ক এবং রাষ্ট্রপতি জাংকারকে আন্তরিক ধন্যবাদ জ্ঞাপন করি| আমরা ভারত ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যেকার সংযুক্তিকে বেশকিছু নতুন ক্ষেত্রেবিস্তৃত করেছি এবং পারস্পরিক বিশ্বাস ও বোঝাপড়ার ওপর ভিত্তি করে এই সংযুক্তিকে আরওবেশি ব্যাপক ও লাভজনক করার জন্য উদ্যোগ গ্রহণের পদক্ষেপ চালিয়ে যেতে সম্মত হয়েছি| আজ আমরা আমাদের গত শিখর সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং গত বছর ঘোষিত এজেন্ডা২০২০-এর রূপায়ণের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করেছি| ভারতে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের জন্য ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের সঙ্গেঋণ চুক্তি স্বাক্ষরও একটি স্বাগত পদক্ষেপ| আন্তর্জাতিক সৌর জোট-এর সদস্য দেশগুলোতে সৌর-সম্পর্কিত প্রকল্পে অর্থবিনিয়োগের জন্য ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাঙ্কের সিদ্ধান্তকেও আমি প্রশংসা করি| আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রবাহকে আরও শক্তিশালী করার জন্য আমাদেরসহযোগিতাকে আরও গভীর করতে ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের সঙ্গে কাজ করতে আমরাপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ| আমার প্রিয় দেশবাসী,নমস্কার! মানুষের মন এমনই যে বর্ষাকাল মানুষের কাছে খুব আনন্দদায়ক হয়। পশু-পাখী,গাছপালা, প্রকৃতি – প্রত্যেকেই বর্ষার আগমনে উৎফুল্ল হয়ে ওঠে। কিন্তু মাঝে মাঝেবর্ষা যখন ভয়ঙ্কর রূপ নেয় তখন বোঝা যায় জলের বিধ্বংসী ক্ষমতা কতটা। প্রকৃতি আমাদেরজীবনদাত্রী, আমাদের পালনকর্ত্রী, কিন্তু কখনও কখনও বন্যা, ভূমিকম্পের মত প্রাকৃতিকদুর্যোগ, তার ভয়াল রূপ প্রচণ্ড বিধ্বংসী হয়ে ওঠে। ঋতুচক্রের এই পরিবর্তন এবংপরিবেশে যে পরিবর্তন আসছে, তার একটা নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে। গত কিছু দিনে ভারতেরকিছু জায়গায় বিশেষ করে অসম, উত্তর-পূর্বাঞ্চল, গুজরাট, রাজস্থান, বাংলা-র কিছুঅংশে অতি বৃষ্টির কারণে প্রাকৃতিক দুর্যোগ সহ্য করতে হচ্ছে। বন্যাবিধ্বস্ত অঞ্চলেরপুরো পর্যবেক্ষণ হচ্ছে। ব্যাপক ভাবে উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে। যেখানে সম্ভবহচ্ছে, সেখানেই মন্ত্রীপরিষদে আমার যে সহকর্মীরা আছেন, তাঁরা পৌঁছে যাচ্ছেন। রাজ্যসরকারও নিজের নিজের মত করে বন্যাকবলিত মানুষদের সাহায্য করার জন্য সবরকম প্রয়াসচালাচ্ছে। সামাজিক সংগঠন, সাংস্কৃতিক সংগঠন, সেবামূলক কাজ করতে ইচ্ছুক নাগরিকরা এইপরিস্থিতিতে মানুষজনের কাছে সাহায্য পৌঁছনোর জন্য সবরকম প্রয়াস চালাচ্ছে। ভারতসরকারের তরফে সেনা জওয়ান, বায়ুসেনা, NDRF, প্যারামিলিটারিফোর্স প্রত্যেকেই এইরকম সময়ে বিপর্যস্ত মানুষের সেবা করার জন্য মন-প্রাণ দিয়ে কাজকরছেন। বন্যার জন্য জনজীবন অত্যন্ত বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। কৃষিশস্য, পশু, পরিকাঠামো –রাস্তা, বিদ্যুৎ, যোগাযোগ ব্যবস্থা সব কিছুর ওপরই এর প্রভাব পড়ে। NDRF -এর Team নিয়োগ করা হয়েছিল। জায়গায়জায়গায় বিপদবন্ধু তৈরি করা, তাঁদের do’s and don’ts –এর প্রশিক্ষণ দেওয়া, স্বেচ্ছাসেবক তৈরি করা, এক জনসংগঠন তৈরি করে এইপরিস্থিতিতে কাজ করার কর্মসূচি তৈরি রাখা হয়েছিল। এখন বর্ষাকালের যে পূর্বাভাসপাওয়া যায়, এখন প্রযুক্তি এত উন্নত হয়ে গেছে, মহাকাশবিজ্ঞান-এরও এক বড় ভূমিকা আছে,এজন্য প্রায়শই অনুমান সঠিক হয়। ধীরে ধীরে আমরাও আমাদের এভাবেই তৈরি করেছি যেবর্ষার পূর্বাভাস অনুযায়ী আমরা এমনভাবেই আমাদের কাজ করব, যাতে আমরা লোকসানের হাতথেকে পরিত্রাণ পেতে পারি। যখনই আমি ‘মন কি বাত’-এর জন্য তৈরি হই, আমি দেখি আমারথেকেও বেশি তৈরি আমার দেশের নাগরিক। একটি ফোন আমি আপনাদের শোনাতে চাই – “নমস্কার প্রধানমন্ত্রীজী,আমি গুরগাঁও থেকে নীতু গর্গ বলছি। আমি ‘চার্টার্ড অ্যাকাউণ্ট্যাণ্ট ডে’-তে আপনারবক্তৃতা শুনে অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছি। আমাদের দেশে এজন্যই গতমাসে আজকের দিনেই Goods and Service Tax – GST শুরু হয়েছে। আপনি কি বলতে পারেন, সরকার যেরকম আশা করছেন সেরকমই ফলাফল কি একমাসবাদে আসবে – না, না? আমি এব্যাপারে আপনার মতামত শুনতে চাইব। GST চালু হওয়ার পর প্রায় একমাস হয়ে গেছে আর তারলাভজনক ফল দেখা যাচ্ছে। আর আমার খুব ভাল লাগছে, খুশি হচ্ছি যে যখনই কোনও দরিদ্রমানুষ চিঠি লিখে বলছেন GST -র জন্য দরিদ্রদেরপ্রয়োজনীয় জিনিসের দাম কীভাবে কমে গেছে, জিনিসপত্র কীভাবে সস্তা হয়ে গেছে। আর সবথেকে বড় কথা এই যে, গ্রাহকদের ব্যবসায়ীদেরওপর ভরসা বাড়ছে। এখন আমি দেখছি যে Transportand Logistic Sector –এর ওপর GST –র কীরকম প্রভাব পড়েছে।কীভাবে ট্রাকের আসা-যাওয়া বেড়ে গেছে। দূরত্ব অতিক্রম করার সময় কতটা কমে গেছে। রাজপথযানজটহীন হয়েছে। ট্রাকের গতি বাড়ার জন্য দূষণও কম হচ্ছে। জিনিসপত্রও অনেক তাড়াতাড়িপৌঁছে যাচ্ছে। যারফলে জোরদার smooth transition হচ্ছে, যাতে জোরদার ভাবে migration হচ্ছে, নতুন registration হচ্ছে, আর এর ফলে সারা দেশে এক নতুন বিশ্বাস তৈরি হচ্ছে। আর কখনও না কখনও,অর্থনীতিবিদ, ম্যানেজমেন্টের বিদগ্ধ ব্যক্তি, Technology -র পণ্ডিত মানুষ, তাঁদের গবেষণার মাধ্যমে ভারতে GST –র প্রয়োগকে বিশ্বের দরবারে এক মডেল হিসেবে অবশ্যই তুলেধরবেন। বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য এ এক Case Study হয়ে উঠবে। কারণ, এত বড় মাপে এত বড় পরিবর্তন, এত কোটিমানুষের তাতে যোগদান, এত বিশাল এক দেশে তার প্রয়োগ এবং সাফল্যের সঙ্গে তাকে এগিয়েনিয়ে যাওয়া, এটা নিজেই এক সাফল্যের শীর্ষবিন্দু। বিশ্ব অবশ্যই এই নিয়ে গবেষণাকরবে। GST প্রয়োগ করা হয়েছে, প্রতিটিরাজ্য তাতে অংশ নিয়েছে, প্রতিটা রাজ্যের তাতে দায়িত্বও আছে। সমস্ত সিদ্ধান্ত সবকটিরাজ্য ও কেন্দ্র মিলিতভাবে সর্বসম্মতিক্রমে নিয়েছে। আর এরই ফল, প্রতিটি সরকারেরএটিই প্রাথমিক লক্ষ্য যে GST –র জন্য যেন দরিদ্রদের ওপরকোনও চাপ না পড়ে। GST অ্যাপ থেকে আপনারাভালোভাবেই জানতে পারবেন, GST -এর আগে কোনও জিনিসের যেদাম ছিল, নতুন পরিস্থিতিতে তার দাম কত হবে, এই সবকিছু আপনাদের মোবাইল ফোনেই পাওয়াযাবে। One Nation One Tax – কত বড় স্বপ্ন পূর্ণ হল। আমি এই কাজেরসঙ্গে যুক্ত সমস্ত মন্ত্রক , সমস্ত দপ্তর, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের সবকর্মচারীদের অন্তর থেকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। GST ভারতের সামগ্রিক শক্তির সাফল্যের এক উত্তম উদাহরণ। এ একঐতিহাসিক উপলব্ধি। আর এটা করব্যবস্থার সংস্কার শুধু নয়, এক নতুন সততার সংস্কৃতিকেশক্তিপ্রদানকারী অর্থব্যবস্থা। এ এক রকম সামাজিক সংস্কারেরও অভিযান। আমি আবারএকবার অত্যন্ত আন্তরিকভাবে এত বড় প্রয়াসকে সফল করার জন্য কোটি কোটি দেশবাসীকে কোটিকোটি নমস্কার করছি। আমারপ্রিয় দেশবাসী, আগস্ট মাস আন্দোলনের মাস। শৈশব থেকে আমরা যে এই কথাটা শুনে আসছিতার কারণ হল ১লা আগস্ট, ১৯২০ আরম্ভ হয়েছিল ‘অসহযোগ আন্দোলন’, এরপর ৯-ই আগস্ট১৯৪২-এ শুরু হয় ‘ভারত ছাড়ো’ – যার অন্য নাম ‘আগস্ট বিপ্লব’, এবং ১৯৪৭-এর ১৫-ইআগস্ট দেশ স্বাধীন হয়। আমাদের নতুন প্রজন্মের জানাদরকার ১৯৪২-এর ৯-ই আগস্ট কী হয়েছিল। ১৮৫৭ থেকে ১৯৪২ সাল পর্যন্ত ভারতবাসীস্বাধীনতার প্রত্যাশার সঙ্গে কীভাবে নিজেদের একাত্ম করেছিল, তার জন্য তাদের কতখানিযুঝতে হয়েছে, কত কিছু সহ্য করতে হয়েছে – ইতিহাসের পাতায় পাতায় তার বর্ণনা উন্নতভারত গঠনে আমাদের প্রেরণা স্বরূপ। এ ছিল সেইসময়, যখন হিন্দুস্থানের প্রতিটি কোণে – শহরে-গ্রামে সর্বত্র, শিক্ষিত-অশিক্ষিত,ধনী-দরিদ্র নির্বিশেষে সব মানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের শরিক হয়েউঠেছিল। গণ আক্রোশ তখন চরমে পৌঁছেছিল। মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে লক্ষ লক্ষ ভারতবাসী‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ মন্ত্রে নিজেদের জীবনকে সংগ্রামে সমর্পণ করেছিল। ১৯২০-র‘অসহযোগ আন্দোলন’ আর ১৯৪২-এর ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনে মহাত্মা গান্ধীর দুটি আলাদা রূপদেখা যায়। অসহযোগ আন্দোলনের চেহারা একরকম ছিল, এরপর ’৪২-এ অবস্থা এমন দাঁড়ালো,আন্দোলনের তীব্রতা এতটাই বেড়ে গেল যে মহাত্মা গান্ধীর মতো মহাপুরুষও ‘করেঙ্গে ইয়ামরেঙ্গে’ মন্ত্র দিয়ে দিলেন। এইসব সাফল্যের পিছনে ছিল জনসমর্থন, জনসামর্থ্য,জনসঙ্কল্প এবং জনসংঘর্ষ। গোটা দেশ সেদিন একজোট হয়ে লড়েছিল। আমি কখনও কখনও ভাবি,ইতিহাসের পাতাগুলিকে একত্র করে নিয়ে দেখলে বোঝা যায় ভারতের প্রথম স্বাধীনতাসংগ্রাম হয়েছিল ১৮৫৭-য়। প্রত্যেকটি মানুষ কিছু না কিছু করার জন্যপ্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়েছে। প্রজন্ম বদলে গেছে, কিন্তু তাদের সংকল্পের তীব্রতা কিছুমাত্রকমেনি। একদল মানুষ এসেছে, সংগ্রামে যুক্ত হয়েছে, চলেও গেছে – আবার নতুন দল এসেছে,তারাও একইভাবে সংগ্রামে যোগ দিয়েছে – আর ইংরেজ সাম্রাজ্যকে সমূলে উৎপাটনের জন্যদেশ প্রতি মুহূর্তে চেষ্টা করে গেছে। ১৮৫৭ থেকে ১৯৪২ পর্যন্ত এই প্রচেষ্টাআন্দোলনকে এমন এক পর্যায়ে এনে ফেলে যে ১৯৪২-এ তা চরম সীমায় পৌঁছায় এবং ‘ভারতছাড়ো’-র বিষাণ এমনভাবে বাজে, যার ফলে পাঁচ বছরের মধ্যে ১৯৪৭-এ ইংরেজ চলে যেতেবাধ্য হয়। এখনআমি আপনাদের এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করতে চাই। প্রায় ৭০ বছর হয়ে গেছে। সরকার এসেছে, গেছে। নীতি-নিয়ম তৈরি হয়েছে, পরিবর্তিতহয়েছে, পরিবর্ধিত হয়েছে। দেশের সমস্যামুক্তির জন্য সকলেই নিজের নিজের মতো করেচেষ্টা করে গেছে। দেশে সাধারণের আয় বাড়ানোর জন্য, দারিদ্র্য দূর করার জন্য,বিকাশের জন্য নিরন্তর প্রয়াস চলেছে। এই ২০১৭-র ১৫-ই আগস্ট আমরা সঙ্কল্পপর্বের সূচনা হিসেবে পালন করব এবং ২০২২-এ স্বাধীনতার যখন ৭৫ বছর হবে, ততদিনেঅবশ্যই আমরা সেই সঙ্কল্পেরও সিদ্ধি সাধন করে ফেলব। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৭ পাঁচটি বছর যেমন দেশের স্বাধীনতার নির্ণায়ক হয়ে উঠেছিল, তেমনই ২০১৭থেকে ২০২২ – এই পাঁচ বছরও ভারতের ভবিষ্যৎ গঠনের নির্ণায়ক বর্ষ হয়ে উঠতে পারে – এবংতাকে তা করে তুলতেই হবে। পাঁচ বছর পর আমরা স্বাধীনতার ৭৫ বছর পালন করব। এই আগস্ট মাসে আমাদের শপথ নিতে হবে – অপরিচ্ছন্নতা – ভারত ছাড়ো,দারিদ্র্য – ভারত ছাড়ো, দুর্নীতি – ভারত ছাড়ো, সন্ত্রাসবাদ – ভারত ছাড়ো, জাতিভেদ –ভারত ছাড়ো, সাম্প্রদায়িকতা – ভারত ছাড়ো। আজ আর ‘করেঙ্গে ইয়ে মরেঙ্গে’-র প্রয়োজননেই, তার বদলে নতুন ভারত গড়ার সঙ্কল্পের সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করতে হবে, মনেপ্রাণেতার সাফল্যের জন্য চেষ্টা করতে হবে। সঙ্কল্পকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের বাঁচতে হবে, লড়াইকরতে হবে। আমিআজ বিশেষ করে online world – কে, কারণ আমরা যেখানেই থাকি না কেন, online -এ তো অবশ্যই থাকি, সেই যে অনলাইন দুনিয়া, আরবিশেষ করে আমার যুব বন্ধুরা, আমার যুবসাথীদের, আমন্ত্রণ জানাচ্ছি নতুন ভারতেরনির্মাণ কাজে উদ্ভাবনী শক্তির সাহায্যে যুক্ত হতে এগিয়ে আসুন। আসুন, প্রযুক্তিব্যবহার করে ভিডিও পোস্ট, ব্লগ, নিবন্ধ, নতুন নতুন আইডিয়া নিয়ে এগিয়ে আসুন। এইআন্দোলনকে এক জন-আন্দোলনের রূপ দিতে হবে। ‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’-এও যুব বন্ধুদেরজন্য ‘ Quit India Quiz ’ প্রতিযোগিতা আয়োজন করাহবে। এই Quiz প্রতিযোগিতা দেশের যুবসম্প্রদায়কে দেশের গৌরবশালী ইতিহাস এবং স্বাধীনতা সংগ্রামের নায়কদের সঞগে পরিচিতকরানোর এক প্রচেষ্টা। আমি আশা করব আপনারা এটির ব্যাপক প্রচার ও প্রসার করবেন। আমিত্বথেকে বহুত্বের দিকে যাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়। অর্থব্যবস্থার কথা বলতে গেলে রাখীবন্ধনউৎসবের কয়েক মাস আগে থেকেই শত শত পরিবারে ছোটো ছোটো পারিবারিক ব্যবসায় রাখী তৈরিশুরু হয়ে যায়। আজকেআমি যখন পরব, উৎসব এবং এর সঙ্গে যুক্ত গরীব ব্যক্তিদের অর্থব্যবস্থার কথা বলছি,তখন একই সঙ্গে আমি পরিবেশের কথাও বলতে চাই। কখনও কখনও আমি ভাবি যে আমার থেকেওদেশবাসী অনেক বেশি সজাগ এবং সক্রিয় এবং সেটা আমি উপলব্ধিও করেছি। গত একমাস যাবৎপরিবেশের বিষয়ে সজাগ নাগরিকরা আমাকে চিঠি লিখেছেন। তাঁরা আমাকে আবেদন জানিয়েছেন যেসময় থাকতে আমি যেন গণেশ চতুর্থীতে eco-friendly গণেশের কথা বলি যাতেলোকেরা মাটির তৈরি গণেশ পছন্দ করেন, পরিকল্পনা বানান। ১২৫-তম বর্ষ আর ১২৫ কোটি দেশবাসী। লোকমান্য তিলকের ভাবনার সঙ্গে সাযুজ্য রেখে সার্বজনিক গণেশউৎসব পালন করি এবং একই সঙ্গে পরিবেশের সুরক্ষার জন্য eco-friendly গণেশ অর্থাৎ মাটির তৈরি গণেশ ব্যবহারের সঙ্কল্প করি। আমি সমস্ত দেশবাসীকে আগামী অনেকউৎসবের জন্য অনেক অনেক শুভকামনা জানাচ্ছি। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমরা নিরন্তর দেখছি যে শিক্ষা ক্ষেত্রে হোক, আর্থিক ক্ষেত্রহোক, সামাজিক ক্ষেত্র হোক বা ক্রীড়াক্ষেত্র হোক – আমাদের কন্যারা দেশের নামউজ্জ্বল করছে, নতুন নতুন সাফল্যের শীর্ষে পৌঁছে যাচ্ছে। আমাদের দেশবাসীদের আমাদেরকন্যাদের নিয়ে গর্ব হয়, আমরা সম্মানিত হই তাঁদের জন্য। এই কিছুদিন আগেই আমাদেরমেয়েরা মহিলা ক্রিকেটের বিশ্বকাপে অসাধারণ নৈপুণ্য দেখিয়েছেন। এই সপ্তাহে আমার এইসব খেলোয়াড় মেয়েদের সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়েছিল। তাঁদের মুখে এইবোঝার ছাপ ছিল। ওইসব মেয়েদের আমি আমার এক আলাদা মূল্যায়নের কথা বলেছি। আমি এমনখেলা দেখেছি যে ভারতের খেলোয়াড়রা যদি বিফল মনোরথ হয় তো দেশবাসীর রাগ খেলোয়াড়দেরওপর পড়ে। কিছু মানুষ তো মানমর্যাদা ভেঙে এমন কিছু কথা বলে দেন, এমন কিছু জিনিসলিখে দেন যে খুবই কষ্টদায়ক হয়। আমি এর মধ্যে এক সুন্দর পরিবর্তনদেখছি, আর আমি এই মেয়েদের বলেছি যে আপনারা দেখুন, এই সৌভাগ্য কেবল আপনাদেরই হয়েছে।আপনারা যে সফল হননি এটা মন থেকে দূর করে দিন। ম্যাচ জিতুন বা না জিতুন, আপনারা একশপঁচিশ কোটি দেশবাসীর মন জিতে নিয়েছেন। সত্যি সত্যি, আমাদের দেশের যুব সম্প্রদায়,বিশেষ করে আমাদের মেয়েরা দেশের নাম উজ্জ্বল করার জন্য অনেক কিছু করছে। আবার একবার স্মরণ করাতে চাই ১৫-ই আগস্টকে।আবার একবার স্মরণ করাতে চাই ২০২২ সালে স্বাধীনতার ৭৫ বছরকে। প্রতিটি দেশবাসীপ্রতিজ্ঞা করুক, প্রতিটি দেশবাসী তাঁদের সংকল্প পূর্ণ করার পাঁচ বছরের পথনির্দেশতৈরি করুক। দেশের ভাগ্য, দেশের ভবিষ্যৎ আরওভাল হতে থাকবে এই বিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে যাই। ভারত ও বিদেশ থেকে আগত বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ – আপনাদের সবাইকে সুপ্রভাত জানাই। গ্লোবাল বিজনেস সামিটে আবার উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। প্রথমেই একটি ব্যবসায়িক শীর্ষ বৈঠকের মূল সুর হিসাবে ‘সামাজিক’ শব্দটি ব্যবহারের জন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদ জানাতে চাই। এছাড়া, আপনাদের এই বৈঠকের মূল সুরের দ্বিতীয় শব্দ হিসেবে ‘ধারাবাহিক উন্নয়ন’কে বেছে নেওয়া এবং কিভাবে উন্নয়নকে ধারাবাহিক করে তোলার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করা যায়, তা নিয়ে আপনাদের আলোচনার জন্য আমি অত্যন্ত আনন্দিত। অন্যদিকে, বৈঠকের মূল সুরের তৃতীয় শব্দ হিসেবে যখন আপনারা ‘কর্মক্ষমতার পরিধি বৃদ্ধি’র কথা বলেন, তখন আমার দৃঢ় প্রতীতি হয় যে, আপনারা প্রকৃতই ভারতের জন্য সমস্যা সমাধানের বিষয়ে কথা বলছেন। ২০১৩ সালের দ্বিতীয়ার্ধ থেকে ২০১৪ সালের প্রথম দিক পর্যন্ত দেশকে কোন চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়াতে হয়েছিল তা আপনাদের থেকে আর ভালো কে জানে! ব্যাপক হারে মুদ্রাস্ফীতি দেশের প্রতিটি পরিবারকে আঘাত করছিল। চলতি খাতে ক্রমবর্ধমান ঘাটতি এবং উচ্চহারে রাজকোষ ঘাটতির ফলে দেশের ব্যাপক স্তরে অর্থনীতির স্থিতিশীলতা আঘাত করতে উদ্যত হয়েছিল। এই সব সূচকগুলি এক অন্ধকারাচ্ছন্ন ভবিষ্যতের ইঙ্গিত করছিল। সমগ্র দেশ সম্পূর্ণ নীতি-পঙ্গুতার মুখে দাঁড়িয়েছিল। এর ফলে, আমাদের অর্থনীতি যেখানে পৌঁছনো দরকার, সেখানে পৌঁছতে পারছিল না। আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী ভঙ্গুর পাঁচটি দেশ গোষ্ঠীর এই সদস্যরা অর্থনৈতিক স্বাস্থ্য বিষয়ে উদ্বিগ্ন হয়ে উঠছিল। সর্বত্র এক ধরণের আত্মসমর্পণের ধারণা যেন পেয়ে বসেছিল। এরকম এক পটভূমিকায় আমাদের সরকার দেশের মানুষের সেবা করার ব্রত নিয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করেছিল এবং আজ দেশের পরিস্থিতিতে সুস্পষ্ট পরিবর্তন নজরে পড়ছে। ২০১৪ সালের পর হতাশার জায়গা নিয়েছে এক নতুন আশা। প্রতিবন্ধকতার জায়গা নিয়েছে আশাবাদ। বিভিন্ন ইস্যুর পরিবর্তে এসেছে সুনির্দিষ্ট উদ্যোগ। ২০১৪ সাল থেকে ভারত প্রায় সমস্ত আন্তর্জাতিক সূচকের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উন্নতি ঘটিয়েছে। এথেকে পরিষ্কার বোঝা যায় যে, ভারতে পরিবর্তন সূচিত হচ্ছে এবং ভারত সম্বন্ধে বিশ্বের ধারণাতেও পরিবর্তন এসেছে। আমি জানি, কিছু মানুষ আছেন যাঁরা এই দ্রুত উন্নয়ন পছন্দ করছেন না। তাঁদের বক্তব্য হচ্ছে, বিভিন্ন সূচকে ভারতের অবস্থানের উন্নতি আসলে কাগজে-কলমে উন্নতির কথা বলে, কিন্তু বাস্তবে কোন কিছুই পরিবর্তন হয়নি। আমার মনে হয়, এটা সত্যের অপলাপ। বিভিন্ন সূচকে ভারতের অবস্থানকে সাধারণত উন্নতির বিলম্বিত সংকেত হিসাবে ধরা হয়। পরিবর্তনটা প্রথম হয় বাস্তবে এবং কিছু সময় পর সূচকের অবস্থানে তার প্রতিফলন ঘটে। এই ‘সহজে ব্যবসার সুবিধা’র সূচকের কথাই ধরা যাক। আমাদের অবস্থান গত চার বছরে বিশ্ব সূচকে ১৪২ থেকে উঠে ৭৭ হয়েছে, যা এক ঐতিহাসিক ঘটনা। কিন্তু সূচকে এই পরিবর্তনের আগেই, বাস্তবে পরিবর্তন সংঘটিত হয়েছে। এমনকি, ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের জন্য আইন মেনে চলার সুবিধা আগের তুলনায় অনেক বেড়েছে। বর্তমানে ৪০ লক্ষ টাকার লেনদেন পর্যন্ত কোন ব্যবসার জন্য জিএসটি-তে নথিভুক্ত করার প্রয়োজন হয় না। বর্তমানে ৪০ লক্ষ টাকা লেনদেন পর্যন্ত কোন ব্যবসার জন্য আয়কর দিতে হয় না। বর্তমানে ১.৫ কোটি টাকা পর্যন্ত লেনদেনযুক্ত যে কোন ব্যবসায় ‘কম্পোজিট স্কিম’-এর জন্য যোগ্যতা অর্জন করে এবং অতি সামান্য কর দিতে হয়। একইভাবে, বিশ্বব্যাপী পর্যটনে প্রতিযোগিতার সূচকের ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থান ২০১৩ সালের ৬৫ থেকে ২০১৭-য় ৪০ হয়েছে। অনুরূপভাবে, বিশ্বব্যাপী উদ্ভাবন সূচকেও ভারতের অবস্থান ২০১৪ সালের ৭৬ থেকে ২০১৮ সালে ৫৭ হয়েছে। উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে অগ্রগতি, এর মাধ্যমে প্রতীয়মান হচ্ছে। সংস্কৃতি ক্ষেত্রেও উন্নয়ন চোখে পড়ছে। দেশে পেটেন্ট এবং ট্রেডমার্কের জন্য আবেদনের সংখ্যাও বহুলাংশে বৃদ্ধি পেয়েছে। এইসব পরিবর্তন আসলে এক নতুন শৈলীর প্রশাসনের জন্যই সম্ভব হচ্ছে এবং এগুলি নানাভাবে দৃশ্যমান হচ্ছে। ২০১৪ সাল থেকে পরিবর্তনের এক আকর্ষণীয় নমুনা আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা বিভিন্ন ধরণের প্রতিযোগিতা দেখতে পাচ্ছি। সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের মধ্যে প্রতিযোগিতা। রাজ্যগুলির মধ্যে প্রতিযোগিতা। উন্নয়নের জন্য প্রতিযোগিতা। লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রতিযোগিতা। আজ ভারত প্রথমে ১০০ শতাংশ পরিচ্ছন্নতার লক্ষ্য অর্জন করবে, নাকি ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণের লক্ষ্য অর্জন করবে, তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা। প্রথমে সমস্ত গ্রাম ও জনপদে সড়ক সংযোগ স্থাপিত হবে, নাকি সমস্ত পরিবারে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হবে, সে বিষয়ে প্রতিযোগিতা। কোন রাজ্য কত বেশি লগ্নি আকর্ষণ করবে তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা। কোন রাজ্য দরিদ্র মানুষের জন্য দ্রুতগতিতে কত বেশি সংখ্যক গৃহ নির্মাণ করবে তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা। কে সবচেয়ে বেশি দুর্নীতি করতে পারবে, তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা। কে দ্রুততম গতিতে দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত হতে পারবে, তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা। কে সবচেয়ে অভিনব কায়দায় দুর্নীতি করতে পারবে, তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা। কে কয়লা কিংবা স্পেকট্রামের নিলাম থেকে টাকা কামাতে পারবে, তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা। কমনওয়েল্‌থ গেম্‌স থেকে বেশি টাকা পাওয়া যাবে, নাকি প্রতিরক্ষা চুক্তি থেকে বেশি টাকা কামানো যাবে, তাই নিয়ে প্রতিযোগিতা। আমরা এসব দেখেছি এবং এটাও জেনেছি, এই ধরণের প্রতিযোগিতায় কারা যুক্ত ছিল। আমি কোন ধরণের প্রতিযোগিতা আপনারা পছন্দ করবেন, তা স্থির করার ভার আপনাদের হাতেই ছেড়ে দিতে চাই। দশকের পর দশক ধরে এমন কথা বলা হত যে কিছু বিষয় ভারতে করা একেবারেই অসম্ভব। ২০১৪ সাল থেকে আজ পর্যন্ত আমাদের দেশ যে উন্নতি অর্জন করেছে, তা থেকে আমার দৃঢ় প্রতীতি হয় যে, ১৩০ কোটি ভারতবাসীর এই দেশে কোন কিছুই অসম্ভব নয়। এটা বলা হত যে ভারতকে পরিচ্ছন্ন করে তোলা অসম্ভব, কিন্তু ভারতের মানুষ এই অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলছেন। ১৯৯১ সালের পর, অর্থাৎ, উদারীকরণ-পরবর্তী সময়ে আমাদের দেশে প্রায় সব সরকারকেই এই সমস্যার মুখোমুখী দাঁড়াতে হয়েছে – যাকে বিশেষজ্ঞরা বলেছেন, স্বল্প সময়ের অর্থনৈতিক বৃদ্ধির দরুণ অর্থনীতির ‘তেতে ওঠা’। এর ফলেই, আমরা কখনই সুষম ও উচ্চহারে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে পারিনি। ২০১৪-১৯ পর্যন্ত দেশে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গড় হার দাঁড়িয়েছে ৭.৪ শতাংশ এবং মুদ্রাস্ফীতির গড় হার দাঁড়িয়েছে ৪.৫ শতাংশেরও কম। ভারতীয় অর্থনীতির উদারীকরণ পর্বের পর, এটাই হবে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির গড় হারের সর্বোচ্চ মান এবং যে কোন সরকারের আমলে মুদ্রাস্ফীতির সর্বনিম্ন হার। এইসব পরিবর্তন এবং সংস্কারের ফলে আমাদের অর্থনীতি এক নতুন রূপান্তরের পথে এগিয়ে চলেছে। ভারতীয় অর্থনীতি তার আর্থিক সম্পদ প্রসারিত করতে সক্ষম হয়েছে। এখন আর ভারতের অর্থনীতি লগ্নির প্রয়োজনে ব্যাঙ্কের কাছ থেকে ঋণের ওপর নির্ভরশীল নয়। উদাহরণ হিসেবে বলা যেতে পারে, পুঁজি বাজার থেকে অর্থ সংগ্রহের কথা। ২০১১-১২ থেকে ২০১৩-১৪ – এই সময়কালে, অর্থাৎ, বর্তমান সরকারের তিন বছর আগে, ইক্যুইটির মাধ্যমে সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ ছিল বছরে প্রায় ১৪,০০০ কোটি টাকা। গত চার বছরে এই ক্ষেত্রে সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে বছরে ৪৩,০০০ কোটি টাকা। এই পরিমাণ আগের থেকে তিনগুণেরও বেশি। ২০১১-১৪ পর্যন্ত ‘বিকল্প লগ্নি তহবিল’–এর মাধ্যমে যে অর্থ বাজার থেকে সংগৃহীত হয়েছে, তার পরিমাণ ছিল ৪,০০০ কোটি টাকারও কম। আমাদের সরকার অর্থনীতিতে পুঁজি সংগ্রহের নতুন এই উৎসকে গড়ে তোলার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ নিয়েছে। এখন আপনারা তার সুফল দেখতে পাচ্ছেন। ২০১৪-১৮ পর্যন্ত চার বছরে ‘বিকল্প লগ্নি তহবিল’–এর মাধ্যমে আমাদের দেশে মোট সংগৃহীত অর্থের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৮১,০০০ কোটি টাকা। যা প্রায় আগের থেকে ২০ গুণের সমতুল। অনুরূপভাবে, আমরা যদি কর্পোরেট বন্ডের প্রাইভেট প্লেসমেন্টের কথা ভাবি, তাহলে দেখা যাবে, ২০১১-১৪ সালের মধ্যে এই খাতে সংগৃহীত অর্থের গড় পরিমাণ ছিল প্রায় ৩ লক্ষ কোটি টাকা, অর্থাৎ, প্রায় ৪,০০০ কোটি ডলারের সমতুল। বর্তমানে এই ক্ষেত্রে গত চার বছরে সংগৃহীত অর্থের গড় পরিমাণ ৫ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকা ছাড়িয়ে গেছে, যা প্রায় ৭,৫০০ কোটি ডলারের সমতুল। এক্ষেত্রে আগের তুলনায় প্রায় ৫০ শতাংশ বৃদ্ধি ঘটেছে। এসব কিছু থেকেই ভারতীয় অর্থনীতির ক্ষেত্রে আস্থার পরিবেশের বিষয়টি বোঝা যায়। বর্তমানে শুধু এই আস্থার পরিবেশ যে অভ্যন্তরীণ বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রেই দেখা যাচ্ছে তাই নয়, বৈদেশিক বিনিয়োগকারীদের ক্ষেত্রেও এই আস্থা পরিলক্ষিত হচ্ছে। গত চার বছরে আমাদের দেশে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল ২০১৪ সালের আগের সাত বছরের সমান। এইসব কিছু অর্জন করতে ভারতকে রূপান্তরের জন্য সংস্কারের প্রয়োজন। দেউলিয়া বিধি, জিএসটি, রিয়েল এস্টেট আইন-এর মতো কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপের ফলে আমাদের দেশে উচ্চতর হারে অর্থনৈতিক বৃদ্ধির এক জোরদার ভিত গড়ে উঠেছে। আমাদের দেশের সমাজের বৃহত্তর অংশের কল্যাণের লক্ষ্যে আমরা এইসব সংস্কারের কাজ একটুও না থেমে চালিয়েছি। ভারত ১৩০ কোটি মানুষের আশার দেশ এবং এ দেশের উন্নয়নের জন্য কেবলমাত্র একটি দৃষ্টিভঙ্গি কখনই সম্ভব নয়। নতুন ভারতের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের জন্য, সে জাতি, ধর্ম, ভাষা এবং শ্রেণী নিরপেক্ষভাবে স্থির হয়েছে। আমরা এক নতুন ভারত সৃষ্টির জন্য কঠোর পরিশ্রম করে চলেছি, যা ১৩০ কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন পূরণ করবে। নতুন ভারতের জন্য আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিতে একদিকে যেমন ভবিষ্যতের কথা আছে, অন্যদিকে অতীতের সমস্যা সমাধানের কথাও আছে। তাই আজ ভারত যখন তার দ্রুততম ট্রেন নির্মাণ করেছে, একইসঙ্গে ভারতের সমস্ত প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিংও তুলে দেওয়া হয়েছে। আজ ভারত যখন দ্রুতগতিতে আইআইটি এবং এইম্‌স নির্মাণ করে চলেছে, একইসঙ্গে দেশের সমস্ত বিদ্যালয়ে শৌচাগার নির্মাণের ব্যবস্থাও করেছে। আজ ভারত যখন দেশে ১০০টি স্মার্ট শহর গড়ার উদ্যোগ নিয়েছে, একইসঙ্গে দেশের ১০০টি উন্নয়নকামী জেলার দ্রুত উন্নয়ন করার উদ্যোগও নিশ্চিত করেছে। আজ ভারত যেমন বিদ্যুতের রপ্তানিকারক হয়ে উঠেছে, একইসঙ্গে স্বাধীনতার পর থেকে অন্ধকারে থাকা কোটি কোটি পরিবারের প্রত্যেকটিতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগও নেওয়া হয়েছে। আজ যখন ভারত মঙ্গল গ্রহে মহাকাশ যান পাঠানোর কথা ভাবছে, একইসঙ্গে, প্রত্যেক নাগরিকের মাথার ওপর যাতে ছাদ থাকে সে ব্যবস্থাও করেছে। আজ ভারত যখন বিশ্বের দ্রুততম বৃদ্ধিশীল অর্থনীতির দেশ হিসেবে পরিগণিত হয়েছে, একইসঙ্গে, সবচেয়ে দ্রুতগতিতে দারিদ্র্য দূরীকরণেরও উদ্যোগ নিয়েছে। আমরা বর্তমানে ‘এ’, ‘বি’, ‘সি’ মানসিকতা থেকে সরে এসেছি। ‘এ’ হল এড়িয়ে চলা, ‘বি’ হচ্ছে কবর দেওয়া, এবং কোন ইস্যুকে এড়িয়ে না গিয়ে আমরা সেই ইস্যুর মোকাবিলা করেছি। কোন বিষয়কে কবর না দিয়ে, আমরা তাকে খুঁড়ে বের করেছি এবং মানুষকে জানিয়েছি। সমগ্র ব্যবস্থাকে বিভ্রান্তির মুখে না ফেলে আমরা দেখিয়েছি যে সব কিছুরই সমাধান সম্ভব। আমরা প্রতি বছর ৬,০০০ কোটি টাকা নগদ সুবিধা প্রদান করে ক্ষুদ্র এবং প্রান্তিক শ্রেণীর ১২ কোটি কৃষকের কাছে পৌঁছনোর উদ্যোগ নিয়েছি। এর ফলে, আগামী ১০ বছরে আমাদের কৃষকদের ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকা (বা ১০,০০০ কোটি ডলার) প্রদান করা হবে। আমাদের অসংগঠিত ক্ষেত্রে কোটি কোটি শ্রমিকের জন্য আমরা একটি পেনশন ব্যবস্থা চালু করতে চলেছি। এবং অন্যটি সবার জন্য বিশেষ করে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বপ্ন পূরণের জন্য বস্তুগত পরিকাঠামো নির্মাণের কাজ করছে। অতীতে যা ঘটেছে তাতে আমাদের কোন হাত ছিল না, কিন্তু ভবিষ্যতে যা ঘটবে তা পুরোটাই আমাদের হাতে। এক্ষেত্রে আমাদের অবদানের মাত্রা বিশ্বকে অবাক করবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, প্রথম তিনটি পর্যায়ের শিল্প বিপ্লবে ভারত তেমন কিছু করতে পা পারলেও এই সময়ে ভারত যে শুধুমাত্র চতুর্থ পর্যায়ের শিল্প বিপ্লবের বাসে চড়েছে তাই নয়, তার চালকের ভূমিকা নিয়েছে। ডিজিটাল ইন্ডিয়া, স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া, মেক-ইন-ইন্ডিয়া এবং ইনোভেট ইন্ডিয়া-র মতো আমাদের উদ্যোগের ফলে সুফল পাওয়া যাচ্ছে। আপনারা কি জানেন যে, ২০১৩-১৪-র মধ্যে যেখানে আমাদের দেশে প্রায় ৪,০০০ পেটেন্ট দেওয়া হয়েছিল, ২০১৭-১৮-র মধ্যে এই পেটেন্টের সংখ্যা বেড়ে ১৩,০০০ ছাড়িয়ে গেছে। এক্ষেত্রে বৃদ্ধি হয়েছে তিনগুণ। অনুরূপভাবে, আপনারা কি জানেন যে আমাদের দেশে ট্রেডমার্ক রেজিস্ট্রেশনের সংখ্যা ২০১৩-১৪-র ৬৮,০০০ থেকে ২০১৬-১৭-য় বেড়ে হয়েছে ২.৫ লক্ষ। এক্ষেত্রে বৃদ্ধি হয়েছে প্রায় চারগুণ। আপনারা হয়তো শুনে সুখী হবেন যে, ভারতে আজ যে সংখ্যায় স্টার্ট-আপ নথিভুক্ত হয়েছে, তার ৪৪ শতাংশ দ্বিতীয় এবং তৃতীয় স্তরের শহর থেকে এসেছে। সারা দেশে শত শত ‘অটল টিঙ্কারিং ল্যাব’ কাজ শুরু করেছে এবং উদ্ভাবনের এক পরিবেশকে লালনপালন করা হচ্ছে। আমাদের ছাত্রছাত্রীরা যাতে ভবিষ্যতের উদ্ভাবক হয়ে উঠতে পারেন, এই কর্মসূচি তার ভিত্তি স্থাপন করবে। আমি এটা জেনে অত্যন্ত চমৎকৃত হয়েছি যে, সাপুড়ে জনগোষ্ঠীর এক কিশোরী কম্পিউটারের মাউস নিয়ে খেলা করছেন এবং ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচিতে দারুণভাবে যুক্ত হয়েছেন। একইসঙ্গে, এটা দেখা আমার খুব ভালো লাগে যে আমাদের গ্রামের যুবকরা প্রতিযোগিতামূলক পরীক্ষায় সাফল্যের জন্য ওয়াইফাই এবং ডিজিটাল যন্ত্রপাতি ব্যবহার করছেন। আমাদের দেশের ধনী ও দরিদ্রের মধ্যে প্রভেদ ঘুচিয়ে চলেছে প্রযুক্তি। এইসব কাহিনী ভারতের ইতিহাসের নতুন অধ্যয় রচনা করছে। জনসাধারণের সহায়তা এবং অংশীদারিত্বে ২০১৪ সালের পর থেকে ভারত দ্রুত অগ্রগতি ঘটিয়ে চলেছে। জন-ভাগিদারী ছাড়া এই কাজ কোনভাবেই সম্ভব হত না। এইসব অভিজ্ঞতায় আমাদের বুকে এই আস্থা যোগায় যে আমদের দেশ তার সব নাগরিকের জন্য এগিয়ে চলার, সমৃদ্ধ হওয়ার পর্যাপ্ত সুযোগ দিতে পারবে। আমরা ভারতকে ১০ ট্রিলিয়ন ডলার অর্থনীতির দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা ভারতকে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা ভারতকে অগণিত স্টার্ট-আপের দেশ হিসেবে গড়ে তোলার জন্য আগ্রহী। আমরা সারা বিশ্বে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎসের দিকে অগ্রগতির ক্ষেত্রে নেতৃত্বদানের জন্য অপেক্ষা করছি। আমরা আমাদের জনসাধারণকে শক্তি নিরাপত্তা দিতে চাই। আমরা আমাদের আমদানি-নির্ভরতা কমাতে চাই। আমরা বিদ্যুৎচালিত যানবাহন এবং বিদ্যুৎ সংরক্ষণ যন্ত্র নির্মাণের ক্ষেত্রে বিশ্বের প্রথম স্থান দখল করতে চাই। মনে এই সমস্ত ইচ্ছা নিয়ে আমরা নতুন ভারতের স্বপ্নের জন্য নিজেদের উৎসর্গ করি। আপনাদের অজস্র ধন্যবাদ। আমি মানুষকে প্রায়শই আশ্চর্য হতে শুনি যে, প্রতিদিন বিশ্বেকত পরিমাণ ঘটনা ঘটছে যা সংবাদপত্রে জায়গা পেয়ে যায়| এর জন্য কোনো সংবাদপত্র এক বছর ধরে প্রতিদিন সামান্য কয়েককলাম বা ইঞ্চির জায়গা কি দিতে পারে? প্রতিদিন সেখানে সেই সংবাদপত্রের ভাষায় একটিসাধারণ বাক্য থাকবে, যার সঙ্গে এর অনুবাদ ও ভারতের প্রধান ভাষাগুলিতে বর্ণান্তরথাকবে| প্রিয়নাগরিকবৃন্দ, আশাকরি, বেশআশা ও আনন্দের মধ্য দিয়ে শেষ হয়েছে আপনাদের দেওয়ালি উদযাপন। আজ আমি আপনাদের কাছেকিছু জরুরি বিষয় ও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তের কথা জানাব। এই দিনটিতে আমার একটিবিশেষ আবেদন রয়েছে আপনাদের কাছে। তারপর থেকে দুটি বছর আমাদের কেটেছে প্রচন্ড খরার মধ্যে। কিন্তু তাসত্ত্বেও ১২৫ কোটি ভারতবাসীর সহযোগিতা ও সমর্থনের মধ্য দিয়ে গত আড়াই বছরের মধ্যেবিশ্ব অর্থনীতিতে ভারত হয়ে উঠেছে এক ‘উজ্জ্বল কেন্দ্রবিন্দু’। একথা শুধু আমরাইবলছি না, একথা বলছে আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার এবং বিশ্ব ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। আমাদের এইউন্নয়ন প্রচেষ্টার মন্ত্রই হল ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ : সকল নাগরিককে সঙ্গে নিয়ে সকল নাগরিকদের জন্যই এই উন্নয়ন প্রচেষ্টা। প্রধানমন্ত্রীজন ধন যোজনা, জন সুরক্ষাযোজনা, ক্ষুদ্রশিল্পোদ্যোগীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা, দলিত, আদিবাসীএবং মহিলাদের জন্য স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া কর্মসূচি, দরিদ্র মানুষেরঘরে গ্যাস সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা, কৃষকদের আয় ওউপার্জনে সুরক্ষাদানের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা ও প্রধানমন্ত্রী কৃষিসিচাঁই যোজনা, কৃষকদেরস্বার্থে কৃষিক্ষেত্রে যথাসম্ভব ভালো উৎপাদন সম্ভব করে তোলার লক্ষ্যে মাটিরস্বাস্থ্য পরীক্ষা কর্মসূচি, উৎপাদিত পণ্যেরউচিৎ মূল্য কৃষকদের কাছে পৌঁছে দিতে ই-নাম জাতীয় বাজার স্থাপন কর্মসূচি – এ সমস্ত কিছুই হল আমাদের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার প্রতিফলন মাত্র। বহু চেষ্টা চালানোসত্ত্বেও এই বিষয়টিতে আমরা নেমে আসতে পেরেছি মাত্র ৭৬-এ। আমি বলছি না যে,এক্ষেত্রে উন্নতি কিছু হয়নি। আমি শুধু বোঝাতে চেয়েছি যে দুর্নীতি ও কালো টাকাকিভাবে সমস্ত কিছু গ্রাস করতে চাইছিল। শুধুমাত্র ব্যক্তিগত স্বার্থসিদ্ধির উদ্দেশ্যে সমাজের কোনও কোনও স্তরেদুর্নীতির কুফল ছড়িয়ে দেওয়ার প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। দরিদ্র ও প্রান্তিকমানুষের কল্যাণের কথা তারা চিন্তাই করে না। কোনও কোনও ব্যক্তি আবার ব্যক্তিগতলাভের আশায় তাদের ক্ষমতার অপব্যবহার করেছে। আমরা এমন ঘটনার কথাও শুনেছি যে, একজন দরিদ্র অটো রিক্‌শা চালক তাঁরগাড়িতে ফেলে যাওয়া সোনার অলঙ্কার ফিরিয়ে দিয়েছেন আসল মালিকের কাছে। আমরা শুনেছি এমনট্যাক্সি চালকদের কথাও, যাঁরা তাঁদের ট্যাক্সিতে ফেলে যাওয়া সেলফোন ফিরিয়ে দিতেতার সঠিক মালিকের খোঁজে হন্যে হয়ে ঘুরে বেড়িয়েছেন। আবার এমন সব্জি বিক্রেতার কথাওআমাদের কানে এসেছে, যিনি ক্রেতার ফেলে যাওয়া অতিরিক্ত অর্থ ফিরিয়ে দিয়েছেন তাঁরকাছেই। যে কোনও দেশের উন্নয়নের ইতিহাসে এমন একটি সময় আসে, যখন কোনও না কোনও কঠিনসিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রয়োজন হয়ে পড়ে। বহু বছর ধরেই আমাদের দেশ উপলব্ধি করেছে যেকালো টাকা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস আমাদের সমাজে গভীর ক্ষত সৃষ্টি করে উন্নয়নের দৌড়েআমাদের পিছিয়ে দিতে চাইছে। এইঘটনা চলে আসছে বছরের পর বছর। অনেক সময়েই নকল ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট সমেত অনেকেই ধরাপড়েছে এবং এই ধরণের বহু নোট আটকও করা হয়েছে। একদিকে যখন সন্ত্রাসবাদের সমস্যার মুখোমুখি আমরা, অন্যদিকে তেমনই আমাদেরসামনে চ্যালেঞ্জ এনে দিয়েছে কালো টাকা ও দুর্নীতির রমরমা। দায়িত্বভার গ্রহণের ঠিকপরেই শীর্ষ আদালতের এক অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে আমরা এক বিশেষ তদন্তকারী দল‘সিট’ গঠন করেছিলাম। · বিদেশে গচ্ছিতকালো টাকা ঘোষণার জন্য একটি আইন অনুমোদন করা হয় ২০১৫ সালে; · মার্কিনযুক্তরাষ্ট্র সহ বহু দেশের সঙ্গে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে তথ্য বিনিময়েরলক্ষ্যে চুক্তি সম্পাদন করা হয়; · দুর্নীতিরমাধ্যমে অর্জিত কালো টাকা বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বেনামে লেনদেন বন্ধ করতে ২০১৬’রআগস্ট মাসে এক কঠোর আইন বলবৎ করা হয়; · ভালো রকমপেনাল্টি সহ কালো টাকা ঘোষণার জন্য একটি কর্মসূচিও চালু করা হয়। আমার প্রিয় দেশবাসী, গত আড়াই বছর ধরে আমাদের এই সমস্ত প্রচেষ্টার ফলে দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিতপ্রায় ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি টাকার সন্ধান আমরা পেয়েছি। সৎ নাগরিকরা দুর্নীতি, কালোটাকা, বেনামী সম্পত্তি, সন্ত্রাস এবং জাল নোটের বিরুদ্ধে এই লড়াই চালিয়ে যাওয়ারপক্ষে। কিছু কিছু সরকারি আধিকারিকদের বিছানার তলায় কোটি কোটি নগদ টাকা মজুতের খবরেসৎ নাগরিকরা নিশ্চয়ই বিচলিত হবেন না। এমনকি চটের থলিতে বহু নগদ অর্থের সন্ধানমিলেছে একথাতেও আজ আর অবাক হওয়ার কিছু নেই। এই বিপুল পরিমাণ অর্থ সরাসরিভাবে যুক্ত দুর্নীতির সঙ্গে। অসৎ উপায়ে অর্জিতঅর্থ মুদ্রাস্ফীতিকে আরও বিপজ্জনক করে তুলেছে। আর এ সমস্ত কিছুর ফল ভোগ করতে হচ্ছেদরিদ্র সাধারণ মানুষকে। শুধু তাই নয়, দরিদ্র ও মধ্যবিত্তদের ক্রয় ক্ষমতার ওপরও তারপ্রভাব পড়ছে প্রত্যক্ষভাবে। আপনাদেরই হয়তো অভিজ্ঞতা হয়েছে জমি বা বাড়ি কেনার সময়েযখন চেক ছাড়াও বেশ বড় অঙ্কের টাকা দাবি করা হয় নগদে। এরফলে, সম্পত্তি ক্রয়েরক্ষেত্রে বিপাকে পড়েন সৎ ব্যক্তিরা। অর্থের অপব্যবহার কৃত্রিম উপায়ে দাম বাড়িয়েদিচ্ছে জমি, বাড়ি, উচ্চ শিক্ষা, স্বাস্থ্য সহ বিভিন্ন সম্পদ ও পরিষেবার। বহু বছর ধরেই নির্বাচনে কালো টাকার ভূমিকা সম্পর্কে তর্ক-বিতর্ক তো চলছেই। দুর্নীতি ও কালো টাকার এই দৌরাত্ম্য বন্ধ করতে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি যে,বর্তমানে চালু ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে লেনদেন আজ অর্থাৎ ০৮ নভেম্বর, ২০১৬’রমধ্যরাত্রি থেকেই অবৈধ বলে ঘোষণা করা হবে। এর অর্থ হল, আজ মাঝরাত থেকেই লেনদেনেরক্ষেত্রে এই নোট ব্যবহার করা যাবে না। জতীয়তা বিরোধী এবং সমাজ বিরোধীদের হাতে মজুত৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট এর পর থেকে শুধুমাত্র কিছু কাগজের টুকরোয় পরিণত হবে। কিন্তুসৎ এবং খেটে খাওয়া মানুষের অধিকার ও স্বার্থ পুরোপুরি সুরক্ষিত থাকবে। আমি আপনাদেরএই মর্মে আশ্বাস দিচ্ছি যে, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫, ২ ও ১ টাকার নোট ও মুদ্রার আইনিবৈধতা বজায় থাকবে এবং তার কোনও ক্ষতি হবে না। দুর্নীতি, কালো টাকা এবং জাল নোটের দৌরাত্ম্যের বিরুদ্ধে আমাদের এই পদক্ষেপসাধারণ মানুষের হাতকে আরও শক্ত করবে। আগামী দিনগুলিতে নাগরিকদের অসুবিধা দূর করতেকয়েকটি ব্যবস্থা আমরা গ্রহণ করছি। · যাঁদের কাছে৫০০ ও ১০০০ টাকার পুরনো নোট রয়েছে, তাঁরা ব্যাঙ্ক বা ডাকঘরে তাঁদের অ্যাকাউন্টে তাজমা দিতে পারবেন ১০ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত। এ ব্যাপারে আপনাদের দুশ্চিন্তার কোনও কারণ নেই। · আপনাদেরঅ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়ার পর প্রয়োজনে যখন ইচ্ছা তা আপনারা তুলে নিতে পারেন। · নতুন নোটেরযোগানের কথা চিন্তা করে প্রথম কয়েকদিন দিনে ১০ হাজার টাকা এবং সপ্তাহে ২০ হাজারটাকার বেশি তোলার অনুমতি দেওয়া হবে না। তবে পরে পর্যায়ক্রমে এই সীমা আরও বাড়ানোহবে। · ব্যাঙ্কঅ্যাকাউন্টে টাকা জমা দেওয়া ছাড়াও আরেকটি সুযোগেরও সংস্থান রাখা হয়েছে। · তাৎক্ষণিকপ্রয়োজনে ব্যাঙ্ক, প্রধান ডাকঘর কিংবা উপ-ডাকঘরে গিয়ে এবং আধার কার্ড, ভোটারকার্ড, রেশন কার্ড, পাসপোর্ট, প্যানকার্ড কিংবা অন্য কোনও অনুমোদিত পরিচয়পত্রদেখিয়ে পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের বিনিময়ে নতুন নোট সংগ্রহ করা যাবে। · ১০ নভেম্বরথেকে ২৪ নভেম্বর পর্যন্ত এই বিনিময়ের সীমা হবে ৪০০০ টাকা। পরে, ২৫ নভেম্বর থেকে ৩০ডিসেম্বর পর্যন্ত এই সীমা আরও বাড়ানো হবে। · অনেকের পক্ষেইহয়তো ৩০ ডিসেম্বর, ২০১৬ তারিখের মধ্যে তাঁদের পুরনো ৫০০ অথবা ১০০০ টাকার নোটবিনিময় করা সম্ভব নাও হতে পারে। · ০৯ নভেম্বর এবংকোনও কোনও স্থানে ১০ নভেম্বর পর্যন্ত এটিএম-গুলির কাজকর্ম বন্ধ থাকবে। খোলার পরপ্রতিদিন কার্ড পিছু মাত্র ২০০০ টাকা করে তোলা যাবে। · পরে, এই মাত্রাবাড়িয়ে ৪০০০ টাকা করা হবে। · আজ মধ্যরাত্রিথেকে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে লেনদেনের ক্ষেত্রে আইনি বৈধতা থাকছে না। তবে, মানবতারকারণে এবং নাগরিকদের দুর্ভোগ ও হয়রানি কমাতে আগামী ৭২ ঘন্টার জন্য অর্থাৎ ১১নভেম্বর মাঝরাত পর্যন্ত কিছু কিছু ক্ষেত্রে বিশেষ ব্যবস্থার সংস্থান রাখা হয়েছে। · এই সময়কালেসরকারি হাসপাতালগুলিতে অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার কাজে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট ব্যবহার করা যাবে। · যাঁদেরপরিবারের কোনও সদস্য অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বা পড়বেন, তাঁরা এরফলে উপকৃত হবেন। · সরকারিহাসপাতালগুলির ওষুধ বিক্রয় কেন্দ্রে চিকিৎসকের প্রেসক্রিপশন সহ ওষুধ কেনারক্ষেত্রে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটে লেনদেন গ্রাহ্য হবে। · আগামী ৭২ ঘন্টাঅর্থাৎ ১১ নভেম্বর, মাঝরাত পর্যন্ত রেলের টিকিট বিক্রয় কাউন্টার, সরকারি বাস ওবিমান পরিবহণের টিকিট কাউন্টার, টিকিটের বিনিময়ে পুরনো নোট গ্রহণ করবে। যাঁরা এইসময়ে সফরে যাচ্ছেন বা যাবেন, তাঁরা উপকৃত হবেন এই ব্যবস্থায়। · আগামী ৭২ ঘন্টাপর্যন্ত ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট গ্রহণ করা হবে এই সমস্ত স্থানে : Ø রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির পেট্রোল, ডিজেল এবং সিএনজি গ্যাস বিক্রয়কেন্দ্র Ø কেন্দ্র বা রাজ্য সরকার অনুমোদিত সমবায় ক্রেতা ভাণ্ডার Ø রাজ্য সরকারের দুধ বিক্রয় কেন্দ্র এই সমস্ত কেন্দ্রে পুরনো নোট সংগ্রহ ও মজুতের যথাযথ রেকর্ডের ব্যবস্থা করাহয়েছে। · আন্তর্জাতিকবিমানবন্দরগুলিতে আগমন ও প্রস্থানের ক্ষেত্রে যে সমস্ত যাত্রীর কাছে অনধিক ৫০০০টাকা পর্যন্ত ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট থাকবে তাঁরা সেগুলির বিনিময়ে নতুন নোট সংগ্রহকরতে পারেন কিংবা ঐ পুরনো টাকাই ব্যবহার করতে পারেন। · বিদেশিপর্যটকরা অনধিক ৫০০০ টাকা পর্যন্ত বিদেশি মুদ্রা কিংবা পুরনো নোটে লেনদেন করতেপারবেন। এই সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ সত্ত্বেও সৎ নাগরিকরা সাময়িকভাবে অসুবিধায় পড়তেপারেন। আমাদের অভিজ্ঞতায় দেখেছি, সাধারণ নাগরিকরা জাতির স্বার্থে যে কোনও ধরণেরত্যাগ স্বীকার করতে কিংবা অসুবিধা ভোগ করতে সর্বদাই প্রস্তুত। দেশের প্রত্যেক নাগরিকের ওপর পূর্ণ আস্থা রয়েছে আমার।তাঁরা সকলেই একবাক্যে সামিল হবেন আমাদের এই মহাযজ্ঞে। এই কাজের জন্য গোপনীয়তা রক্ষা জরুরি ছিল। ঠিক যে সময়ে আমি আপনাদের এইসংবাদটি জানাচ্ছি, ঠিক তখনই ব্যাঙ্ক, ডাকঘর, রেল, হাসপাতাল ও অন্যান্যরাও এই খবরজানতে পারছেন। শীর্ষ ব্যাঙ্ক, বিভিন্ন ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ এবং ডাকঘরগুলিকে খুবস্বল্পকালীন নোটিশেই সমস্ত ব্যবস্থা ও আয়োজন সম্পূর্ণ করতে হবে। আমি জানি যে,এজন্য আরও সময় প্রয়োজন। এই কারণে দেশের সমস্ত ব্যাঙ্কে আগামী ০৯ নভেম্বর স্বাভাবিককাজকর্ম বন্ধ থাকবে। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় ধৈর্যও সংকল্পের সঙ্গে ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরগুলির সঙ্গে সর্বতোভাবে সহায়তা করার জন্য আমিআপনাদের সকলের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। প্রিয় নাগরিকবৃন্দ, সময়ে সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের সম্মতিক্রমে শীর্ষ ব্যাঙ্ক উচ্চতর মূল্যেরনতুন নোট চালু করে। ২০১৪ সালে ৫০০০ ও ১০০০০ টাকার নোট চালুর সুপারিশ করেছিল শীর্ষব্যাঙ্ক। ৫০০ ও ২০০০ টাকার নতুন নোটগুলির নক্‌শা হবে সম্পূর্ণ নতুন ধরণের। এই অভিযানে যতইআপনারা সাহায্যের হাত বড়িয়ে দেবেন, ততই সফল হয়ে উঠবে আমাদের এই বিশেষ প্রচেষ্টা। দুর্নীতি ও কালো টাকা দৈনন্দিন জীবনযাত্রার অঙ্গ হয়ে ওঠায় উদ্বিগ্ন আমরাসকলেই। উইপোকা যেমন নষ্ট করে ফেলে সবকিছুই, ঠিক সেরকমভাবেই এই ধরণের চিন্তা ক্রমশগ্রাস করছে আমাদের রাজনীতি, প্রশাসন ও সমাজ ব্যবস্থাকে। এই ক্ষয় বা অবক্ষয় থেকেমুক্ত নয় কোনও সরকারি প্রতিষ্ঠানই। আমি বারংবার লক্ষ্য করেছি যে, নাগরিকদের অধিকাংশকেই যদি বেছে নিতে বলা হয়অসততা ও দুর্ভোগ বা অসুবিধাকে, তাহলে তাঁরা অসুবিধা ভোগ করাকেই শ্রেয় বলে মনেকরেন। কারণ, কোনও অবস্থাতেই তাঁরা অসাধুতার সঙ্গে আপোষ করতে রাজি নন। ঠিক যেভাবে আপনারা দেওয়ালির সময় আপনাদের বাড়ির চারপাশকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্নকরে তোলেন, ঠিক সেইভাবেই এই দেশকে শুদ্ধ করার কাজে আপনারা এগিয়ে আসুন – আমি আরওএকবার এই আবেদন রাখছি আপনাদের কাছে। সাময়িক দুর্ভোগ ও অসুবিধাকে আসুন আমরা উপেক্ষা করি সংহতি ও বিশ্বাসযোগ্যতার এই উৎসবে আসুন আমরা সকলে সামিল হই আগামী প্রজন্ম যাতে মর্যাদার সঙ্গে জীবন ধারণ করতে পারে, আসুন আমরা সেইপরিবেশ সম্ভব করে তুলি দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে আসুন আমরা আমাদের সংগ্রাম চলিয়ে যাই জাতীয় সম্পদ যাতে দরিদ্র মানুষের কল্যাণ সম্ভব করে তুলতে পারে, আসুন আমরাতা নিশ্চিত করি যে সমস্ত নাগরিক আইনের অনুশাসন মেনে চলেন, তাঁরা যাতে তাঁদের ন্যায্যসুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত না হন, আসুন তা আমরা নিশ্চিত করি আপনাদের ধন্যবাদ। অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই মউ ই-গভর্নেন্স, এম-গভর্নেন্স, ই-জনসেবা প্রদান, সাইবার নিরাপত্তা,সফটওয়্যার টেকনোলজি পার্ক, স্টার্ট-আপস ইকোসিস্টেম ইত্যাদি ক্ষেত্রে ঘনিষ্টসহযোগিতায় উত্সাহিত করবে বলে আশা করা যাচ্ছে| এক হাজার জনেরও বেশি কর্মী ও আধিকারিক উপস্থিত ছিলেনপ্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময়কালে। রাজ্যসভায় বকেয়া থাকা নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) বিল, ২০১৩ প্রত্যাহারের একটি প্রস্তাব আজ (১৩ জুন, ২০১৮) অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। পরবর্তীকালে, সংসদে অনুমোদিত নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০ কার্যকর হয় ২০১০-এর ২৫শে নভেম্বর। ঐ আইনের কয়েকটি বিষয়ের সংশোধন তথা নতুন কিছু সংযোজনের লক্ষ্যে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় (সংশোধন) বিল, ২০১৭ রাজ্যসভায় পেশ করা হয় ২০১৩-র ২৬শে আগস্ট। অন্যদিকে, নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় আইন, ২০১০-এর ৭ নং অনুচ্ছেদের আওতায় এবং রাষ্ট্রপতির অনুমোদনক্রমে ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন পর্ষদ গঠন করা হয় ২০১৬-র ২১শে নভেম্বর। প্রস্তাবিত সংশোধন বিলটি সম্পর্কে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণের পূর্বে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন পর্ষদের সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শ গ্রহণ জরুরি অনুভূত হওয়ায়, ঐ বিল আপাতত প্রত্যাহার করে নেওয়ার প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কাছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালন পর্ষদ প্রয়োজনে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়, ২০১০ আইনটি আবার নতুন করে খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় সংশোধন বা সংযোজনের পরামর্শ দিতে পারে। এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পঠনপাঠনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন বিদেশ মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ বিগত ২০১৪-র সেপ্টেম্বর মাসে। বর্তমানে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিদর্শক হলেন ভারতের রাষ্ট্রপতি এবং এর আচার্য এবং উপাচার্য পদে রয়েছেন যথাক্রমে ডঃ বিজয় ভাদকর এবং অধ্যাপিকা সুনয়না সিং। পঠনপাঠনের তিনটি বিভাগে বিশ্ববিদ্যালয়ের মোট ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বর্তমানে ১১৬। ৩৭১ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা ব্যয়ে মায়নামারে ৬৯টি সেতু নির্মাণের প্রস্তাবে আজ সম্মতি জানিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। দু’দেশের মধ্যে যান চলাচল ও পণ্য পরিবহণের বিষয়টিও এই সেতু নির্মাণের ফলে সহজতর হয়ে উঠবে। “আজ বিশ্বডায়াবেটিস দিবসে আসুন আমরা সকলে ডায়াবেটিস প্রতিরোধে সুস্থ এবং উন্নততর জীবনযাপনেরসঙ্কল্প গ্রহণ করি। নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদি পর্তুগালের দাবানলে প্রাণহানির জন্য দুঃখ প্রকাশ করলেন| ইন্সট্রুমেন্টেশনলিমিটেডের কোটা ইউনিট বন্ধ করে দেওয়া এবং সংস্থার পালাক্কড় ইউনিটটি কেরল সরকারকেহস্তান্তর করার সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। দশেরা / পূজা অবকাশের সময় প্রতি বছর এই বোনাস দেওয়া হয়ে থাকে। এ বছরের উৎসবের অবকাশের আগেই এই সিদ্ধান্ত কার্যকর হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি মঙ্গলবার সিঙ্গাপুরে ইনস্টিটিউট অব টেকনিকেল এডুকেশনের ক্যাম্পাস পরিদর্শন করেন। তাঁকে স্বাগত জানান সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী লি সেইন লুং। উভয় নেতাকে ছাত্র-ছাত্রীরা উদ্দীপনার সঙ্গে সম্বর্ধনা জানায়। তাঁরা মেরিটাইম ট্রেনিং সেন্টার,এরোস্পেস হাব এবং প্রিসিশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগ পরিদর্শন করেন। উভয় নেতাই বুকএন্ডস-এ সাক্ষর করেন। শ্রী নরেন্দ্র মোদি সিঙ্গাপুরে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি মেমোরিয়াল মার্কার-এ শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেন। ১৯৪৫-এর জুলাইয়ে ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি তথা আই এন এ-র “অজ্ঞাত সৈনিক”দের স্মৃতির উদ্দেশ্যে একটি স্মারকসৌধের জন্য ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস। এই মার্কার-টি মূল স্মারকসৌধটি যে জায়গায় তার পাশেই অবস্থিত। ণ্ডীগড়ে রবিবার ভারত-ফ্রান্স বাণিজ্য বৈঠকে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে, তাঁর ভাষণে সি ও পি-২১ – এ গৃহীত প্রস্তাবে সমন্বয়ের দায়িত্ব পালনের জন্য ফ্রান্সের বিশেষ প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, তিনি স্মরণ করেন যে, বৈঠকের ঘোষণার পূর্বে প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ টেলিফোনে প্রস্তাবিত চুক্তির খসড়ার বিষয়টি তাঁর সঙ্গে আলোচনা করেছিলেন। সি ও পি-২১ বৈঠকের কয়েকদিন আগে প্যারিসে যে ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসবাদী হামলা চলেছিল, তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মূল নীতি থেকে বিন্দুমাত্র বিচ্যুত না হয়ে কিভাবে সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা করতে হয়, ফ্রান্স তা প্রমাণ করেছে। যে কোনও ধরণের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে জেহাদে ভারত ফ্রান্সের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাবে বলে প্রধানমন্ত্রী প্রতিশ্রুতি দেন। ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে পারস্পরিক শুভেচ্ছা ও সম্প্রীতির যে বাতাবরণ রয়েছে তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুটি দেশই পারস্পরিক সহযোগিতা প্রসারের জন্য পূর্বনির্দিষ্ট। নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা প্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ভারতের মেধাশক্তি এবং ফ্রান্সের নির্মাণ ও উৎপাদন ক্ষমতা সমগ্র বিশ্বে নিরাপত্তা নিশ্চিত করে তুলতে পারে। এই প্রসঙ্গে সাইবার নিরাপত্তার কথাও উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফ্রান্সের বিভিন্ন সংস্থার ভারতে বিনিয়োগ রয়েছে যথেষ্ট মাত্রায়। “সর্দারবল্লভভাই প্যাটেলের পুণ্যতিথিতে তাঁর উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানাই। “বিশিষ্ট বিজ্ঞানী অধ্যাপক ইউ আর রাও-এর প্রয়াণে আমি মর্মাহত। ভারতের মহাকাশ কর্মসূচিতে তাঁর উল্লেখযোগ্য অবদানের কথা কখনই বিস্মৃত হওয়ার নয়।” বছরের পর বছর ধরে এই পৃথিবীতে নানা বৈচিত্র্যের সমাহার হয়েছে। অরুণাচল প্রদেশ এবং মিজোরাম রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “অরুণাচল প্রদেশ রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে জানাই আমার অভিনন্দন। আগামী বছরগুলিতে এই রাজ্যটির সার্বিক বিকাশ ও উন্নয়ন কামনা করি। জনসাধারণের প্রত্যাশা পূরণে উদ্যোগী হওয়ার জন্য অরুণাচল প্রদেশ সরকারের প্রতি আমার শুভেচ্ছা রইল। মিজোরাম রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে জানাই আমার শুভ কামনা। এগুলির আওতায় যে সমস্ত ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রসার ও বিনিময় প্রচেষ্টাবাস্তবায়িত হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে উচ্চগতির রেল করিডর, বর্তমান রুটগুলিতে ট্রেনচলাচলের ক্ষেত্রে গতি বৃদ্ধি, বিশ্বমানের রেল স্টেশন নির্মাণ ও উন্নয়ন, রেলপরিকাঠামোর আধুনিকীকরণ ইত্যাদি। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতির আসন্ন ভারত সফরকালে এই মউ স্বাক্ষরিত হবে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে দু’দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি পাবে। একই সঙ্গে, এই মউ চুক্তি এমন এক কাঠামো ও অনুকূল বাতাবরণ প্রদান করবে, যা দু’দেশের সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সংস্থাগুলি একে অপরের শক্তি, বাজার, প্রযুক্তি ও নীতি সম্বন্ধে অবগত হবে। দু’দেশের সংস্থাগুলির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাবে, যার ফলে বাণিজ্যিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা সম্ভব হবে। আশা করা হচ্ছে, এই চুক্তির ফলে ভারতীয় ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির জন্য সুযোগ-সুবিধার একাধিক দ্বার উন্মোচিত হবে। উত্তরাখন্ডের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথ নেওয়ায় শ্রী ত্রিবেন্দ্র সিং রাওয়াতকে অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন “ শ্রী ত্রিবেন্দ্রসিং রাওয়াত এবং তাঁর মন্ত্রিসভা শনিবার শপথ নেওয়ায় অভিনন্দন জানাই। তাঁরা কঠোরপরিশ্রম করে মানুষের আশা-আকাঙ্কা পূরণ করতে পারবেন বলে আমার স্হির বিশ্বাস। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নৌ-বাহিনী দিবসে দেশের নৌ-সেনাদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (৬ই মে) ওড়িশা সফর করেছেন। তেসরা মে, ঘুর্ণিঝড় ‘ফণী’তে বিপর্যস্ত রাজ্যের পরিস্থিতি তিনি পর্যালোচনা করেন। পিপিলি, পুরী, কোনারক, নিমপথ এবং ভুবনেশ্বরে ‘ফণী’তে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকাগুলি তিনি আকাশপথে ঘুরে দেখেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন ওড়িশার রাজ্যপাল, অধ্যাপক গণেশি লাল, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নবীন পট্টনায়েক এবং পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান। প্রধানমন্ত্রী এরপর ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের জন্য কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের প্রবীণ আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেন। এর আগে, ২৯শে এপ্রিল আরও ৩৪১ কোটি টাকা রাজ্য সরকারকে দেওয়া হয়েছিল। শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, একটি উপকূলবর্তী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর অভিজ্ঞতা থাকায় এই ধরণের ঘুর্ণিঝড় কতটা ধ্বংসাত্মক হয় তা তিনি জানেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, পরিকাঠামো, আবাসন, কৃষি খামার এবং মৎস্যজীবীদের ক্ষতির পরিমাণ নির্ধারণ করার জন্য একটি কেন্দ্রীয় দল খুব শীঘ্রই রাজ্য সফর করবেন। বিদ্যুৎ, টেলি-যোগাযোগ ও রেল দপ্তরের কেন্দ্রীয় এবং রাজ্যস্তরের আধিকারিকদের তিনি পরিষেবা দ্রুত চালু করার নির্দেশ দেন। যে সমস্ত রাস্তাঘাট ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে, সেগুলিকে দ্রুত মেরামতীর জন্য সড়ক এবং ভূ-তল পরিবহণ মন্ত্রককে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। বন্যা বিধ্বস্ত এলাকার কৃষকদের শস্য বিমা সংক্রান্ত আবেদনের দ্রুত নিষ্পত্তির জন্য তিনি বিমা কোম্পানিগুলিকে দ্রুত পর্যবেক্ষক পাঠাতে বলেছেন। ঘুর্ণিঝড়ে নিহতদের নিকটাত্মীয়দের সাহায্যের জন্য প্রধানমন্ত্রী এককালীন ২ লক্ষ টাকা এবং আহতদের ৫০ হাজার টাকা দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কর্ণাটকের প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন,‘কর্ণাটকের প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে আমার অনেক শুভেচ্ছা জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে আজ, গত ৫ই অক্টোবর রাশিয়ার সঙ্গে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্র বা মউ এবং সমঝোতা সহযোগিতাপত্র স্বাক্ষরের বিষ্যে অবগত করা হয়েছে। ১) কেন্দ্রীয় পরিবহণ মন্ত্রক ও রাশিয়ার পরিবহণ দপ্তরের মধ্যে এই সমঝোতাপত্রের ফলে দু’দেশের মধ্যে পরিবহণ শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়িয়ে তুলতে রাশিয়ার সঙ্গে পরিবহণে সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সাহায্য করবে এবং পরিবহণ সংক্রান্ত শিক্ষার বিষয়েও সহযোগিতা বাড়াবে। ২) রেল ক্ষেত্রে কারিগরি সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য রুশ রেল সংস্থা আরজেডি-র সঙ্গে সমঝোতা সহযোগিতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই সমঝোতাপত্র পরিবহণ শিক্ষায় অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা বাড়াতে সহায়ক হবে। বাণিজ্য, অর্থনীতি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিষয়ক ভারত-রাশিয়া আন্তঃসরকারি কমিশনের কাঠামোর মধ্যে থেকে বিশেষ প্রস্তাব কার্যকর করা সম্ভব হবে। সমঝোতা সহযোগিতাপত্র যে ক্ষেত্রগুলিতে কারিগরি সহযোগিতা বাড়াবে, সেগুলি হ’ল :- ২) আঞ্চলিক স্তরে, রেলের বিভিন্ন শাখায় এবং অন্যান্য নেটওয়ার্কে একটি ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের মাধ্যমে রেল চলাচল নিয়ন্ত্রণের বিষয়টি কার্যকর করা। ৩) রেলের সিগনালিং ও ইন্টারলকিং ব্যবস্থা যৌথ প্রযুক্তিতে নির্মাণ। ৪) সেমি-হাইস্পীড বা এর উচ্চগতির সুইচগুলি স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের সুবিধা। ৫) রাশিয়ার রেল সম্পর্কিত উচ্চ শিক্ষার ব্যবস্থাপনার মাধ্যমে ভারতীয় রেলকর্মীদের কাজের মানোন্নয়নে প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা। ৬) পণ্য সরবরাহের সর্বোৎকৃষ্ট ব্যবস্থা এবং জার্মানির হামবুর্গে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি পৃথকভাবে এক বৈঠকে মিলিত হন ব্রিক্‌সসদস্যভুক্ত পাঁচটি দেশের নেতৃবৃন্দ। এ বছর সেপ্টেম্বর মাসে চিনের জিয়ামেন-এ যে নবমব্রিক্‌স শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, তারই প্রাক্কালে আয়োজন করা হয় এই পৃথক বৈঠকের। ব্রিক্‌স নেতৃবৃন্দকে ঐ আসন্ন বৈঠকে স্বাগত জানানোর জন্য তিনি যেবিশেষভাবে আগ্রহী একথা অন্যান্য ব্রিক্‌স নেতাদের কাছে ব্যক্ত করেন প্রেসিডেন্ট জি। ব্রিক্‌স-এরজিয়ামেন শীর্ষ বৈঠকের প্রস্তুতি এবং অগ্রাধিকারের বিষয়গুলি সম্পর্কে এদিন খোলামেলাআলোচনা করেন ব্রিক্‌স নেতৃবৃন্দ। ভারতের প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্রিক্‌স-এর একটিনিজস্ব বলিষ্ঠ বক্তব্য রয়েছে যা সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা এবং বিশ্ব অর্থনীতিরপ্রসারে পথ দেখাতে পারে। অর্থের সাহায্যে সন্ত্রাসকে মদতদান, সন্ত্রাসবাদীদেরদালাল হিসেবে কাজ করা, নিরাপদ ঘাঁটি গড়ে তুলতে সাহায্য করা এবং যে কোনরকমভাবেসন্ত্রাসকে সমর্থন ও মদত দেওয়ার বিরুদ্ধে জি-২০-ভুক্ত দেশগুলির সমষ্টিগতভাবে কাজকরে যাওয়া উচিৎ বলে ঘোষণা করেন তিনি। ভারতের সংস্কার কর্মসূচি প্রসঙ্গে শ্রী মোদীবলেন যে বিশ্ব অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টার কাজকে নিরন্তরভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতেযৌথ সহযোগিতার প্রয়োজন। শিক্ষক দিবস উপলক্ষে শিক্ষক সমাজকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। একই সঙ্গে প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডঃ রাধাকৃষ্ণণের জন্মজয়ন্তীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী। ঘটনা ও পরিস্থিতির ওপর প্রতিনিয়ত নজর রাখছেন প্রধানমন্ত্রী। পরিস্থিতি সম্পর্কে সরেজমিনে খতিয়ে দেখতে কেরল রওনা হওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দেন যে তিনি সেখানে পৌঁছনোর পর তাঁর জন্য কোনরকম প্রোটোকলের ব্যবস্থা না রেখে বরং ত্রাণ ও উদ্ধারকাজের ওপর যেন বিশেষ দৃষ্টি হয়। প্রস্তাবিত এইম্‌স-এ গড়ে তোলা হবে ৭৫০ শয্যা বিশিষ্ট একটি হাসপাতাল যেখানে আপৎকালীন পরিষেবা, ট্রমা রোগীদের চিকিৎসা,আয়ূষের জন্য পৃথক শয্যা, ব্যক্তিগত রোগীদের জন্য শয্যা, আই সি ইউ এবং সুপারস্পেশালিটি হাসপাতালের যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা যুক্ত থাকবে। এছড়াও, প্রস্তাবিত এইম্‌স-এস্থাপন করা হবে একটি প্রশাসনিক ব্লক, আয়ূষ ব্লক, প্রেক্ষাগৃহ, রাত্রিকালীন আশ্রয়,হোস্টেল এবং আবাসিক সুযোগ-সুবিধা। ভাতিন্ডায় এই প্রকল্প গড়ে তুলতেব্যয় হবে ৯২৫ কোটি টাকা। বেতন ও মজুরি এবং রক্ষণাবেক্ষণ ও পরিচালনের ব্যয় এর মধ্যেঅবশ্য অন্তর্ভুক্ত নেই। প্রকল্প অনুমোদনের চার বছরের মধ্যেএই প্রকল্পটির নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেখানে স্বচ্ছ শক্তি ২০১৯, মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানদের সভায় অংশ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছ শক্তি ২০১৯ – এর পুরস্কার প্রদান করবেন। প্রধানমন্ত্রী কুরুক্ষেত্রে স্বচ্ছ সুন্দর শৌচালয় প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখবেন এবং একটি জনসভায় ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী হরিয়ানায় একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন/ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। স্বচ্ছ শক্তি, ২০১৯ একটি জাতীয় স্তরের অনুষ্ঠান, যার লক্ষ্য স্বচ্ছ ভারত অভিযানে রূপায়ণে গ্রামীণ মহিলাদের অগ্রণী ভূমিকা জনসমক্ষে তুলে ধরা। সারা দেশ থেকে মহিলা পঞ্চায়েত প্রধানরা এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করবেন। এই বছরের স্বচ্ছ শক্তি অনুষ্ঠানের লক্ষ্য মহিলাদের ক্ষমতায়ন।এ বছর প্রায় ১৫ হাজার মহিলা অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। পানীয় জল ও অনাময় মন্ত্রক হরিয়ানা সরকারের সঙ্গে যৌথভাবে স্বচ্ছ শক্তি ২০১৯ আয়োজনের দায়িত্বে রয়েছে। উদ্যোক্তারা স্বচ্ছ ভারত অভিযানে গ্রামাঞ্চলের তৃণমূল স্তর থেকে সেরা কাজগুলি সকলকে জানাবেন। অনুষ্ঠানে স্বচ্ছ ভারত এবং সাম্প্রতিককালে আয়োজিত স্বচ্ছ সুন্দর শৌচালয় (পরিষ্কার ও পরিচ্ছন্ন শৌচালয়) নামক অভিনব বিশ্ব স্তরের প্রচারানুষ্ঠানের সাফল্যগুলি তুলে ধরা হবে। তার পরের বছর স্বচ্ছ শক্তি ২০১৮ উত্তর প্রদেশের লক্ষ্ণৌতে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। ৮ হাজার জন মহিলা পঞ্চায়েত প্রধান, ৩ হাজার মহিলা স্বচ্ছাগ্রহী এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে জড়িত মহিলাদের স্বচ্ছ ভারত গড়ে তোলার প্রতি অসাধারণ অবদানকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। এবার এই কর্মসূচির তৃতীয় পর্বটি কুরুক্ষেত্র থেকে চালু করা হবে। তৃণমূল স্তরে, গ্রামীণ মহিলারা কিভাবে সমাজে পরিবর্তন আনার দূত হিসাবে কাজ করছেন এবং একটি স্বচ্ছ ভারত গড়ে তুলতে সামনে থেকে নেতৃত্ব দিয়ে মহিলাদের চালু করা উদ্যোগগুলির উদাহরণ এই স্বচ্ছ শক্তি। প্রধানমন্ত্রীশ্রীনরেন্দ্রমোদীরসঙ্গেবৃহস্পতিবারনয়াদিল্লিতেহংকং-এরমুখ্যকার্যনির্বাহীআধিকারিকশ্রীসিওয়াইলিয়ুংদেখাকরেন। সরকারিসফরেপ্রথমবারভারতেআসশ্রীসিওয়াইলিয়ুং-কেস্বাগতজানিয়েপ্রধানমন্ত্রীশ্রীমোদীআশাপ্রকাশকরেন, তাঁরএইসফরেরফলেভারতওহংকং-এরমধ্যেদ্বিপাক্ষিকবাণিজ্য, বিনিয়োগওপর্যটনক্ষেত্রেসহযোগিতাবাড়বে। এছাড়াও কমিটিতে থাকছেন -ভারতের প্রাক্তন বিচারপতি শ্রী আর সি লাহোটি, অবসরপ্রাপ্ত এয়ার চিফ মার্শাল শ্রীএস কৃষ্ণস্বামী, সংবিধান বিশেষজ্ঞ শ্রী সুভাষ কাশ্যপ এবং পরিবেশবিদ শ্রী সি পিভাট। দেশের কয়েকজন রাজ্যপাল, মুখ্যমন্ত্রী, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ, সাংবাদিক,সমাজকর্মী এবং আধ্যাত্মিক নেতাও অন্তর্ভূক্ত হয়েছেন কমিটির সদস্যরূপে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) গুজরাটের জুনাগড় জেলায় একাধিক প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। এগুলির মধ্যে রয়েছে – সরকারি হাসপাতাল, একটি দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র জুনাগড় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকটি ভবন ইত্যাদি। এই উপলক্ষে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৫০০ কোটি টাকার বেশি ৯টি উদ্যোগের আজ শিলান্যাস হচ্ছে বা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হচ্ছে। ভারতের উন্নয়ন যাত্রায় এক নতুন শক্তি ও উদ্যমের সঞ্চার হয়েছে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, রাজ্যের প্রতিটি কোণায় পর্যাপ্ত পরিমাণে জল পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে লাগাতার প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে। একই সঙ্গে, জল সংরক্ষণ নিয়েও কাজ হচ্ছে বলে শ্রী মোদী জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাটের বিভিন্ন জায়গায় মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতাল গড়ে উঠছে। এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলি কেবল রোগীদের পরিষেবা প্রদানই করছে না, সেইসঙ্গে চিকিৎসা সংক্রান্ত পঠন-পাঠনেও সাহায্য করছে। গরিব ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ যাতে সুলভ মূল্যে ওষুধপত্র পায়, তার ওপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ওপর সরকারের অগ্রাধিকার সারা বিশ্বের প্রশংসা পাচ্ছে। পরিচ্ছন্ন ভারত সাধারণ মানুষকে অসুখ-বিসুখ থেকে রক্ষা করবে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে দক্ষ চিকিৎসক ও আধা-চিকিৎসা কর্মীর প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা চাই চিকিৎসা – সাজসরঞ্জাম ও অন্যান্য উপকরণ ভারতেই তৈরি হোক”। তিনি একই সঙ্গে বিশ্ব জুড়ে প্রযুক্তিগত অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে দেশীয় স্বাস্থ্য ক্ষেত্রেও উন্নয়নের গতি বজায় রাখার ওপর জোর দেন। এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নপ্রচেষ্টা এক নতুন তাৎপর্য লাভ করবে। আগামীকালআইজল-এ ট্যুইরিয়াল জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করার আমি এক সুযোগপাব। এই প্রকল্পটি সম্পূর্ণ হয়ে যাওয়ার অর্থ মিজোরামের জনসাধারণের কাছে তা একবিশেষ আশীর্বাদ। যুবশক্তিকেআরও উৎসাহিত করতে কেন্দ্রীয় উত্তর-পূর্বাঞ্চল দপ্তর গড়ে তুলেছে ১০০ কোটি টাকারউত্তর-পূর্ব ভেঞ্চার মূলধন তহবিল। এই তহবিল থেকে আগামীকাল আমি চেক বন্টন করবশিল্পোদ্যোগীদের মধ্যে। ঐ অঞ্চলের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে উত্তর-পূর্ব ভারতের তরুণ ওযুবকদের শিল্পোদ্যোগ স্থাপনে আগ্রহ বৃদ্ধি পাওয়ার ঘটনা আমরা লক্ষ্য করেছি। শিলং-এশিলং-নংস্টয়েন-রংজেন-তুরা সড়কটিরও আমি উদ্বোধন করব। এই প্রকল্পটির মাধ্যমে যোগাযোগএবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির বিষয়টি আরও উৎসাহ লাভ করবে। আমি বক্তব্য রাখব একজনসমাবেশেও। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার (৪ঠা আগস্ট, ২০১৮) আয়ুষ্মান ভারতের অন্তর্গত স্বাস্থ্য নিশ্চয়তা কর্মসূচির প্রস্তুতি খতিয়ে দেখলেন। এই প্রকল্পে প্রতি পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ দেওয়া হবে। লক্ষ্য হল, ১০ কোটিরও বেশি দরিদ্র ও ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারকে এই বিমার আওতায় আনা। অনূর্দ্ধ-১৯বিশ্বকাপ জয়ের জন্য তাঁদের অভিনন্দন জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ হরিয়ানার গুরুগ্রামের সুলতানপুরে কুন্ডলি-মানেসর পালওয়াল পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রান্তবর্তী এক্সপ্রেসওয়ের কুন্ডলি-মানেসর সেকশনের উদ্বোধন করেছেন। এছাড়া তিনি দিল্লী মেট্রো রেলের বল্লভগড় মুজেসর সংযোগকারী লাইনেরও উদ্বোধন করেন এবং শ্রী বিশ্বকর্মা দক্ষতা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন- এই এক্সপ্রেসওয়ে এবং মেট্রো সংযোগ হরিয়ানায় পরিবহন ক্ষেত্রে বিপ্লব আনবে। শ্রী বিশ্বকর্মা দক্ষতা বিশ্ববিদ্যালয় স্হাপনের পর এই অঞ্চলের যুবসমাজ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন- এই এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের কাজ যাতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ করা যায়, সরকার তা নিশ্চিত করেছে। এই এক্সপ্রেসওয়ে দিল্লী ও সংলগ্ন অঞ্চলের দূষণমাত্রা কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। এরফলে বসবাসের সুবিধা বাড়বে এবং পরিবেশবান্ধব ভ্রমণের ব্যবস্হা হবে। পরিবহন সংযোগের গুরুত্বের কথায় জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন- এগুলি সমৃদ্ধি যোগাযোগ ও ক্ষমতায়নের মাধ্যম। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের যুব সমাজের আশা-আকাঙ্খা পূরণে অঙ্গিকারবদ্ধ। শ্রী বিশ্বকর্মা দক্ষতা বিশ্ববিদ্যালয় যুবকদের নতুন সুযোগ গ্রহণে দক্ষ করে তুলবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেন। কেন্দ্রীয় সরকারের উন্নয়নমূলক ধারনাকে বাস্তবায়নে হরিয়ানা সরকারের উদ্যোগের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। ঐঅধ্যাদেশবলে সুসংবদ্ধ পণ্য ও পরিষেবা কর আইন, ২০১৭-র সংস্থানগুলি সম্প্রসারিত করাহয়জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের ক্ষেত্রেও। সত্যি এ বড়ই সম্মান ও শ্লাঘার বিষয়, ভারতে আপনাদের স্বাগতম জানাতে পারছি, ফোরাম ফর ইন্ডিয়া পেসিফিক আইল্যান্ডস কো-অপারেসন, বা যা এখন ফিপিক নামে পরিচিত, তার দ্বিতীয় সভায়। আমি ভীষন কৃতজ্ঞ যে আপনারা ভারতে এসেছেন। আমি জানি, যাত্রাপথ মোটেই সংক্ষিপ্ত নয় আর আপনাদের ব্যস্ততাও প্রচুর। কিন্তু আমি এও জানি যে একাত্ববোধ দূরত্বকে ছোট করে দেয়। বৃহস্পতিবার দিল্লিতে আমাদের রাস্ট্রপতির সাথে আপনাদের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করতে পেরে আমি আনন্দিত। আশা করি আপনারা দিল্লি, আগ্রা ও জয়পুর ভ্রমন উপভোগ করেছেন এবং আমাদের টিম আপনাদের কেনাকাটা করার কিছুটা সুযোগ দিয়েছিলো। আশা করি তাজমহল ভ্রমনও আপনাদের ভালো লেগেছে। যদি এটা আপনাদের প্রথমবার ভারতে আসা হয়, তাহলে নিশ্চয়ই আপনারা এ্দেশের ভৌগলিক আকার,সংস্কৃতি,বৈচিত্র এবং এক মানব-সমুদ্র দেখে অবাক হয়েছেন, ঠিক যেমন আমরা ভাবতে গিয়ে অবাক হই, প্রকৃতির সাথে মেলন্ধনে একটি সুন্দর দ্বীপে একটি জাতি একটি ছোট গোষ্ঠীতে বাস করছে। এমন বৈচিত্রই আমাদের গ্রহকে বিশেষত্ব দিয়েছে। ভারত এবং প্রশান্তমহাসাগরীয় দ্বীপ রাস্ট্রগুলি এই শতকে অংশিদারিত্বের নতুন নজির স্থাপন করছে, এ জন্যেও এটা বিশেষ ব্যাপার। একই লক্ষ্য, আকাঙ্খা এবং সঙ্কট এই অংশিদারিত্বের মূলে। ছোট কিংবা বড়, সব দেশেরই বিশ্বে সমান অধিকার, এই বিশ্বাসের ভিত্তিতেই এই অংশিদারিত্ব। আমরা এও বুঝতে পেরেছি যে বিশ্বায়িত পৃথিবী একের অপরের ওপর নির্ভরতা গভীর করেছে, এবং ভৌগলিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে দিয়েছে। এই কারনে ভারতে এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপগুলিতে বয়ে আসা আশা ও সঙ্কট একই। এই কারনেই কেউ কেউ এই অঞ্চলকে একসাথে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চল বলেন। কিন্তু এটাই একমাত্র বিষয় নয় যা আমাদের একসাথে এনেছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমরা আপনাদের পাশে ছিলাম এবং থাকব | একাত্বতার এই বোধ থেকেই সামোয়াতে গতবছর এস আই ডি এস-এর অধিবেশনে আমরা সবচেয়ে ভালো ভূমিকা নিতে পেরেছি, যা সামোয়া পথরেখার জন্ম দিয়েছে। ২০১৫-পরবর্তী উন্নয়ন রূপরেখার সর্বশেষ নথিতে আমরা এসআইডিএস’র সক্ষমতা নির্মানের ব্যাপারে সমর্থন জানিয়েছি। পরিবর্ধিত ও পুনর্গঠিত রাস্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের উভয় বিভাগে একান্তভাবে এসআইডিএস’র আসনের দাবিতে আমরা আপনাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আছি। মান্যবরগণ, বিশ্ব আপনাদের দেখতে পারে স্বল্প জনসংখ্যার ছোট দ্বীপপুঞ্জ হিসাবে। আমি আপনাদের দেখি বিশাল মহাসাগরীয় ব্যাপক সম্ভাবনা হিসাবে। আপনাদের কারো কারো এমন বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল আছে যা ভারতের ভূমি এবং বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল একসাথে করলে যা হয়, তার থেকেও বড়। আমরা নতুন যুগের এমন এক জায়গায় এখন দাঁড়িয়ে আছি, যেখানে মহাকাশের মতো মহাসাগরও আমাদের অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ চালিকা শক্তি হয়ে উঠবে। মাছ চাষ ছাড়াও, সমুদ্রের সুসংহত ব্যবহার আনবে স্বচ্ছলতা, এবং দেবে পরিবেশ বান্ধব শক্তি,নতুন ওষুধ এবং খাদ্য নিরাপত্তা। আমি এই ব্যাপারে আমাদের সহযোগিতার ব্যাপক সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছি। সুসংহতভাবে মহাসাগর ও সামুদ্রিক সম্পদ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ভারত আপনাদের পাশে দাঁড়াতে পেরে আনন্দিত, যে বিষয়টি সম্প্রতি রাস্ট্রসংঘে চূড়ান্ত হওয়া দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন লক্ষ্য সনদে একটি বিশেষ স্থান পেয়েছে। আমাদের বৈশ্বিক চ্যালেঞ্জের বিষয়গুলিও এক। জলবায়ু পরিবর্তন প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে একটা বড় হুমকি স্বরূপ। ভারতের ৭৫০০ কিলোমিটার সৈকত রেখা এবং ১৩০০ দ্বীপও এর শিকার। আমরা উভয়ই চাইছি, প্যারিসে বছরের শেষদিকে যে সিওপি ২১ হচ্ছে তাতে এই বিষয়ে একটা কার্যকরি কিছু সিদ্ধান্ত হোক। আমরা একসাথে কাজ করেছি যাতে টেকসই উন্নয়নের লক্ষ্যে জলবায়ু পরিবর্তনের ব্যাপারে আলাদা কর্মসূচি এমনভাবে স্থির করা হয় যা উন্নয়নশীল দেশগুলির স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিকে সম্বোধন করে। আমি প্রত্যেক সদস্য দেশকে লিখেছি আগত বছরগুলির জন্য রাস্ট্রসংঘ কার্যপন্থা ঠিক করতে। রাষ্ট্রসংঘ গড়ে ওঠার সাত দশক বাদে বিশ্ব এখন অন্যরকম। রাস্ট্রসংঘকে অবশ্যই পরিবর্তিত বিশ্বের সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। ২১ শতকের প্রাসঙ্গিকতা ও কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে রাস্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পুনর্গঠনের জন্য আমাদের চাপ দিতেই হবে। রাস্ট্রসংঘের সাধারন পরিষদে সভাপতির ভাষন যেন রাস্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ পুনর্গঠনের ভিত্তি হয়, আমরা তার জন্য আপনাদের সাহায্য চাইছি। নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী আসনের জন্য আপনাদের সমর্থন রাস্ট্রসংঘকে দেবে বিশ্বজনীন চেহার এবং সমতা যা আমাদের সময়কে প্রতিফলন করে। যেমন ফিপিক আমাদের জোরালো বৈশ্বিক অংশিদারিত্বের প্রতীক হওয়া উচিত, তেমনি আমরা দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক সহযোগিতার মাধ্যমে অংশিদারিত্ব জোরালো করতে পারি। এই অধিবেশনে ভারত নানা ঘোষনা দিচ্ছে। ভারত ও প্রশান্তমহাসাগরীয় দ্বীপ রাস্ট্রগুলি’র মধ্যে বাণিজ্যের ও বিনিয়োগের এটা হলো প্রথম সোপান। মান্যবরগণ, আপনাদের অনেক দেশে ভারতীয় বংশোদ্ভুতরা আছেন, এটা আমাদের বিশেষ মানবিক বন্ধন। মান্যবরগণ, আমি আপনাদের মতামত শুনতে আগ্রহের সাথে অপেক্ষা করছি। আমাদের সুন্দর এই অংশীদারিত্বকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভবিষ্যত উদ্যোগ সম্পর্কে চিন্তাভাবনাও ব্যক্ত করবো। রাস্ট্রসংঘের নজিরবিহীন ভাবে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ঘোষনা করার পেছনে আপানাদের সমর্থনের জন্য এবং প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবসকে আপনাদের দেশে সফল করার জন্য আমি আপনাদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাচ্ছি। শেষে আমি বলতে চাই, দ্বীপপুঞ্জের রত্নরাজিতে এই পৃথিবী সুশোভিত। এবং দ্বীপপুঞ্জের জীবন ইশ্বরের অপূর্ব ইচ্ছার ও মানবিক আত্মার সুন্দর প্রমাণ। আমরা একসাথে কাজ করব, প্রকৃতির কিছু অমূল্য উপহারকে এবং এই বিশ্বের অসাধারন মানুষদের লালন করতে। ছত্তিশগড়েসিআরপিএফ জওয়ানদের ওপর আক্রমণের ঘটনাকে কাপুরুষোচিত ও নিন্দনীয় বলে আখ্যা দিয়েছেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। জওয়ানদের সাহসিকতার বিশেষ প্রশংসা করে তিনিবলেছেন শহীদদের আত্মোৎসর্গ কখনই বিফলে যাওয়ার নয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার বিদ্যুৎ, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস, কয়লা এবং খনন ক্ষেত্রের মূল পরিকাঠামোমূলক বিষয়গুলির প্রগতি পর্যালোচনা করলেন। পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন পরিকাঠামো সংক্রান্ত মন্ত্রক, নীতি আয়োগ ও প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রধান আধিকারিকসমূহ। বৈঠক চলাকালীন নীতি আয়োগের মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক শ্রী অভিতাভ কান্ত জানান, ভারতের স্থাপিত বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা বেড়ে হয়েছে ৩৪৪ গিগাওয়াট। একই সময়ে সৌরশক্তি ক্ষেত্রেও স্থাপন ক্ষমতা ২.৬ গিগাওয়াট থেকে বেড়ে হয়েছে ২২ গিগাওয়াট। বিচারপতি লীলা শেঠ-এর প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী| এই মঞ্জুরির ফলে আলোচ্য নতুন ৬-টি আই আই টি-কে দ্য ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজি অ্যাক্ট, ১৯৬১-এরআওতায় আনা যাবে এবং এর ফলে এগুলিকে জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসাবে বিবেচ্য হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সেনা কমান্ডারদের যৌথ সম্মেলনে যোগ দিতে আজ (২৮শে সেপ্টেম্বর) রাজস্থানের যোধপুরে গিয়ে পৌঁছেছেন। যোধপুর বায়ুসেনা ঘাঁটিতে তিন বাহিনীর পক্ষ থেকে তাঁকে গার্ড অফ অনার দেওয়া হয়। এরপর তিনি কোনার্ক যুদ্ধ স্মারকে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। কমপ্লেক্সটি পরিদর্শন করেন এবং এই প্রকল্পের মূলে থাকা উদ্ভাবনী চিন্তা-ভাবনা সম্বন্ধে আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নবসারিতে নিরালি ক্যান্সার হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এটি ঐ অঞ্চলের সাধারণ মানুষকে ক্যান্সার প্রতিরোধ ও আরোগ্যলাভের লক্ষ্যে চিকিৎসা পরিষেবা দেবে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর তিনদিনের সফরসূচির মধ্যে গুজরাট সফর শেষ করে পরবর্তী গন্তব্যস্থল সিলভাসা ও মুম্বাই সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রী গুজরাট সফরের প্রথম দিনে ভাইব্যান্ট গুজরাট সম্মেলনের শুরুতে ফ্ল্যাগশিপ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রদর্শনীর উদ্বোধন করেন। শ্রী মোদী আমেদাবাদে অত্যাধুনিক, সুপার-স্পেশালিটি সরকারি হাসপাতাল – সর্দার বল্লবভাই প্যাটেল ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ-এর শিলান্যাস করেন। অনুষ্ঠানের ভাষণে তিনি বলেন, সকলের জন্য সমান সুযোগের প্রতিশ্রুতি পালন করতে এবং ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’-এর মাধ্যমে উন্নততর নতুন ভারত গড়ে উঠবে। সাবরমতীর তীরে প্রধানমন্ত্রীর হাতে আমেদাবাদ শপিং ফেস্টিভ্যাল, ২০১৯-এর উদ্বোধনও আরেকটি আকর্ষণীয় বিষয় ছিল। অনুষ্ঠানের ভাষণে তিনি বলেন, সরকার সর্বদাই দেশে বাণিজ্য-বান্ধব পরিবেশ গড়ে তোলার কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রীর গুজরাট সফরের দ্বিতীয় দিনে তিনদিনব্যাপী ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলন, ২০১৯-এর সূচনা হয়। গান্ধীনগরের মহাত্মা মন্দির প্রদর্শনী ও কনভেনশন সেন্টারে সম্মেলনের নবম সংস্করণের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সমাগত জনগণের উদ্দেশে ভাষণে তিনি বলেন, ভারতের সঙ্গে ব্যবসা করার সুযোগ একটি বড় সৌভাগ্য। ১৮ই জানুয়ারিতে সফররত উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতি সভকত মিরজিয়োয়েভ, চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী মিঃ আন্দ্রেজ বাবিজ, মাল্টার প্রধানমন্ত্রী ডঃ যোশেফ মাসকাট ও ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী মিঃ লার্স লোক্কে রাসমুসেনের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী মোদীর দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা চর্চিত হয়। এরপর গুজরাটের গান্ধীনগরে ডান্ডি কুটিরে থ্রি-ডি লেজার শো প্রদর্শিত হয়। জাতিকে বড়দিনতথা খ্রীস্টমাসের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। এই দিনে আমরা যীশুখ্রীস্টের জীবন ও শিক্ষাদর্শকে উদযাপন করি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তিন তালাক নিয়ে সুপ্রীম কোর্টের রায়কে স্বাগত জানালেন। এই রায়কে ঐতিহাসিক বলে আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এই রায় মুসলিম মহিলাদের সমতা প্রদান করেছে আরনারীদের ক্ষমতায়নে এক শক্তিশালী পদক্ষেপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ তিন তালাক সম্পর্কে মাননীয় সুপ্রীম কোর্টের রায়টি ঐতিহাসিক। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তাজিকিস্তানের জনসাধারণকে সেদেশের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “তাজিকিস্তানের সাধারণ মানুষকে স্বাধীনতা দিবসে আমার শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। তাজিকিস্তানের সঙ্গে ইতিহাস ও সংস্কৃতির সুগভীর বন্ধনে বাঁধা আছে ভারত। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী প্রিয়রঞ্জন দাসমুন্সিরপ্রয়াণে শোক ব্যক্ত করেছেন। ভারতে ফুটবলকে জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে তিনিউল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ টেলিফোনে নেপালের প্রধানমন্ত্রী শ্রী সুশীল কৈরালার সঙ্গে কথা বলেন। শান্তি প্রক্রিয়া এবং সংবিধানের খসড়া প্রণয়নে নেপাল যে ঐতিহাসিক অগ্রগতি উপস্থাপন করেছে সে বিষয়ে উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন তিনি। তিনি বারবার এই বার্তা উচ্চারণ করেন যে, নেপালের সব ক’টি রাজনৈতিক দলের মধ্যে অমীমাংসিত বিষয়গুলি আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে নিতে, প্রয়োজনে জনগণ সহকারে বৃহত্তর আলোচনার মঞ্চের মাধ্যমে, যাতে বিশ্বাস ও আস্থার বাতাবরণ শক্তিশালী হয়ে উঠে এবং তা যেন সমাজের সকল অংশের মধ্যে প্রসারিত হয় এবং যাতে এমন সমাধান সুত্রে উপনীত হওয়া যায় যা এক ঐক্যবদ্ধ, শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও সম্ভাবনাময় উন্নয়নশীল নেপালের সমস্ত নাগরিকের অভিপ্রায়কে প্রতিফলিত করে এবং তাদের আশা-আকাঙক্ষাকে স্থান দেয় | প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী নেপালের নিরাপত্তার জন্য একটি প্রতিবেশী দেশ হিসেবে ভারতের তরফে যা যা করা দরকার তার সমস্ত কিছু যথাসাধ্য করা হবে বলে আশ্বাস দেন। এই চুক্তি অনুযায়ী ভারতের ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ সোলার এনার্জি এবং ফ্রান্সের কমিশারিয়েট আল এনার্জি অ্যাটোমিকে এট আউক্স এনার্জিস অল্টারনেটিভিস সংস্হার মধ্যে পরস্পরের সুবিধার চিন্হিত ক্ষেত্রগুলিতে গবেষনা/হাতেকলমে প্রদর্শন/পাইলট প্রকল্প বিষয়ে কাজ করার লক্ষ্যে উভয় দেশ উদ্যোগ নেবে। পারস্পরিক চুক্তির ভিত্তিতে উভয় দেশই আইএসএ সদস্য রাষ্ট্রগুলিতে পাইলট প্রকল্প রূপায়ন এবং চালু করার জন্য কাজ করবে। যৌথ গবেষনা প্রকল্প, যৌথ গবেষনা এবং উন্নয়ন, যৌথ কর্মশালা, গবেষনা এবং প্রযুক্তি বিনিময় এবং এই ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ বিনিময় সহ নানান উপায়ের মাধ্যমে সহযোগিতার কাজ চলবে। সমঝোতাটিতে দু দেশের মধ্যে কৃৎকৌশল এবং তথ্য নেটওয়ার্কিং বিষয়ে বিনিময়েরও সংস্হান রয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকেও অনুরূপ কিছু সুযোগসুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে চিলির অনুকূলে। ফলে, এই বাণিজ্য চুক্তি সম্প্রসারিত হলে তা থেকে উপকৃত হবে দুটি দেশই। এখান থেকে ঋষি আদিশঙ্কর তাঁর ভারতব্যাপী সফর শুরু করেছিলেন একটাই কারণে, সেটি হল ভারতীয় সভ্যতাকে সুরক্ষিত করা এবং দেশকে ঐক্যবদ্ধ করার জন্য। পরিচ্ছন্ন জ্বালানি এবং এলপিজি কেরল এবং আশপাশের রাজ্যগুলির জনসাধারণের কাছে জনপ্রিয় করে তুলতে বিগত ৫০ বছরেরও বেশি সময় ধরে ভারত পেট্রোলিয়ামের কোচি শোধনাগারটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। পরিবেশ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করতে কেন্দ্রীয় সরকার পরিবেশ সহায়ক পরিবহণ জ্বালানির ব্যবহার বাড়ানোর ব্যাপারে সক্রিয় হয়েছে।এর ফলে, সারা দেশে সিটি গ্যাস ডিস্ট্রিবিউশন (সিজিডি) নেটওয়ার্কের পরিধিও বাড়ানো সম্ভব হয়েছে। সিজিডি নিলামের দশম রাউন্ড সম্পূর্ণ হওয়ার পর দেশের ৪০০-টিরও বেশি জেলা পাইপ সংযুক্ত গ্যাস সরবরাহ ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত হতে পারবে। অশোধিত তেলের আমদানি কমাতে সরকার কিছু ব্যবস্থা নিয়েছে যাতে আমদানি ১০ শতাংশ কমানো যায় এবং এর ফলে দেশে বিদেশি মুদ্রা সঞ্চয় করা সম্ভব হয়। তেল উৎপাদনকারী রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি ১১টি রাজ্যে ১২টি দ্বিতীয় প্রজন্মের ইথানল প্ল্যান্ট স্থাপনের জন্য পদক্ষেপ করছে। এর জন্য ছ’টি সমঝোতাপত্র ইতিমধ্যেই স্বাক্ষরিত হয়েছে। আমার বন্ধুরা, কোচি শোধনাগারের ক্ষমতা ব্যবহার করে প্রপিলিন উৎপাদন সম্ভব হবে আইআরইপি সম্পূর্ণভাবে নির্মাণের পরে।‘মেক ইন ইন্ডিয়া’উদ্যোগের আওতায় বিপিসিএল তিনটি অত্যাধুনিক অ্যাক্রিলিক অ্যাসিড অ্যাক্রিলেট কারখানা গড়ে তুলে অনেকটা দূর এগিয়ে গেছে। আমি আশাবাদী, কোচি শহরে বহু অনুসারী শিল্প গড়ে উঠবে। আমি এও আশা করি, রাজ্য সরকার যে পেট্রো-রসায়ন পার্ক গড়ে তোলার ব্যাপারে উদ্যোগী হয়েছে, সেটি কার্যকর করা হলে বাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা যথেষ্ট বাড়বে। আমি আনন্দিত যে, বিপিসিএল এবং অন্যান্য রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা দক্ষতা উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছে যাতে যুবসম্প্রদায়ের দক্ষতা উন্নয়ন সম্ভব করে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দেওয়া যায়। আমি এট্টুমানুরে মহাদেব মন্দিরের কাছাকাছি দ্বিতীয় ক্যাম্পাসটির শিলান্যাস করতে পেরে আনন্দিত। এদিন প্রধানমন্ত্রী ৭ নং রেস কোর্স রোড-এ এক অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে তিনটে স্বর্ণ বিনিয়োগ সম্পর্কিত স্কিমের অর্থাৎ গোল্ড মনিটাইজেসন স্কিম, গোল্ড সভারিন বন্ড স্কিম এবং গোল্ড কয়েন ও বুলিয়ন স্কিমের সূচনা করবেন| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরনেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বুধবার কর্মপরবর্তী অনুমোদন দেওয়াহল দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রে ভারত এবং সুইস কনফেডারেশনের শিক্ষা, গবেষণা ও উদ্ভাবনসংক্রান্ত রাষ্ট্রীয় সচিবালয়ের মধ্যে সম্পদিত একটি চুক্তিতে। ভারতের দক্ষতা বিকাশও শিল্পোদ্যোগ দপ্তরের কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রীর (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত)সুইজারল্যান্ড সফরকালে এ বছর ২২ জুন স্বাক্ষরিত হয় দু’দেশের মধ্যে এইসমঝোতাপত্রটি। স্বাক্ষরিত চুক্তিটির আওতায় দক্ষতাবিকাশের লক্ষ্যে দক্ষতা ও ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং শ্রেষ্ঠ পন্থা-পদ্ধতি বিনিময়ের ওপরবিশেষ জোর দেওয়া হবে। চুক্তির আওতায় গড়ে তোলা হবে একটি যৌথ কর্মী গোষ্ঠীও, যার কাজহবে এই সমঝোতাপত্রের রূপরেখা বাস্তবায়নের বিষয়টি উদ্ভাবন, দেখভাল ও পর্যালোচনাকরা। সদ্য সমাপ্ত বিশ্ব স্নুকার চ্যাম্পিয়নশিপে অষ্টাদশ বিশ্বখেতাব অর্জনের জন্য শ্রী পঙ্কজ আদবানি’কে অভিনন্দিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রী দিলীপপদগাঁওকারের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “শ্রী দিলীপপদগাঁওকার ছিলেন এক বিশিষ্ট চিন্তাবিদ সাংবাদিকতার ক্ষেত্রে যাঁর অবদান চির অমলিনহয়ে থাকবে। তাঁর মৃত্যুতে আমি মর্মাহত। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১৪ ও ১৫ জুলাই উত্তর প্রদেশের বারানসী, আজমগড় ও মির্জাপুর সফর করবেন। আজমগড়ে ১৪ তারিখ প্রধানমন্ত্রী ৩৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ পূর্বাচল এক্সপ্রেসওয়ের শিলান্যাস করবেন। এই এক্সপ্রেসওয়ের নির্মাণ কাজ শেষ হলে পশ্চিমের নয়ডা থেকে পূর্বের গাজিপুর সহ উত্তর প্রদেশের একাধিক বড় ও ছোট শহরের সঙ্গে দিল্লির যোগাযোগ স্থাপিত হবে। বারানসীতে প্রধানমন্ত্রী ৯০০ কোটি টাকারও বেশি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ ও বেশ কয়েকটি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। যে প্রকল্পগুলি উৎসর্গ করা হবে, তার মধ্যে রয়েছে – বারানসী শহরে গ্যাস বন্টন প্রকল্প এবং বারানসী-বাল্লিয়া ইএমইউ ট্রেন পরিষেবা। পঞ্চকোশী পরিক্রমা মার্গের পাসাপাশি, স্মার্টসিটি মিশন ও নমামি গঙ্গে কর্মসূচির আওতায় একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বারানসীতে একটি আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রেরও শিলান্যাস করবেন। অন্য এক অনুষ্ঠানে, প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ ‘মেরি কাশী’ শীর্ষক একটি বই প্রকাশ করবেন। একই অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী মির্জাপুর মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করবেন। রাজ্যে ১০৮টি জনঔষধি কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (২২শে সেপ্টেম্বর) ওড়িশা ও ছত্তিশগড় সফরে যাবেন। তালচের সার কারখানার পুনরুজ্জীবনের কাজ শুরু করার প্রতীক হিসেবে সেখানে একটি ফলক উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। দেশে এটি প্রথম কারখানা যেখানে কয়লাকে গ্যাসে পরিণত করার মাধ্যমে সার প্রস্তুত করা হবে। সার ছাড়াও এই কারখানায় প্রাকৃতিক গ্যাসও উৎপাদন করবে যার ফলে দেশের শক্তির চাহিদা অনেকাংশে মেটানো সম্ভব হবে। এই বিমানবন্দর চালু হলে ভারতের উড়ান মানচিত্রে পশ্চিম ওড়িশাও চলে আসবে এবং এর ফলে উড়ান প্রকল্পের আওতায় আঞ্চলিক বিমান সংযোগ ত্বরান্বিত হবে। প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে গর্জনবহাল কয়লা খনি এবং ঝাড়সুগুদা-বারাপালি-সারদেগা রেল সংযোগ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এছাড়া, একটি ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে তিনি দুলাঙ্গা কয়লা খনিতে কয়লা উৎপাদন এবং সেখান থেকে কয়লা পরিবহণের সূচনা করবেন। শ্রী মোদী এরপর ছত্তিশগড়ের জঞ্জির চম্পায় যাবেন। সেখানে ঐতিহ্যবাহী তাঁত এবং কৃষি সংক্রান্ত একটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখবেন। জাতীয় সড়ক এবং পেন্দ্রা-অনুপ্পুর তৃতীয় রেললাইন সংক্রান্ত প্রকল্পেরও শিলান্যাস করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে, ফরাসী প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ইমানুয়েল ম্যাক্রঁ২০১৮’র ১০ থেকে ১২ মার্চ ভারতে রাষ্ট্রীয় সফর করেন। দুই নেতা যৌথভাবে ২০১৮’র ১১মার্চ আন্তর্জাতিক সৌর জোটের প্রথম শীর্ষ বৈঠকের যৌথভাবে আয়োজন করেন। নেতৃবৃন্দব্যাপকভিত্তির গঠনমূলক আলোচনা করেন এবং আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়ে দু’দেশেরঅবস্থানের ক্রমবর্ধমান ঐকমত্যের ওপর জোর দেন। 2. ভারতও ফ্রান্সের মধ্যে কৌশলগত সম্পর্কের বিশতম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে দুই নেতা এইসম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। এই সম্পর্ককে নতুন একপর্যায়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তাঁরা সিদ্ধান্ত নেন ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী এবংফ্রান্সের রাষ্ট্রপতির মধ্যে প্রতি দু’বছরে একবার শিখর বৈঠক আয়োজনে তাঁরা একমত হন।উভয় নেতাই অভিন্ন নীতি, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ, আইনের শাসন এবং মানবাধিকারের প্রতিসম্মানের ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে গভীর ও শক্তিশালী করার বিষয়ে রাজি হন। এইউদ্যোগে ভারতের সমর্থনের জন্য ফরাসী রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রঁ প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদজানান। উভয় দেশ মন্ত্রী পর্যায়ের বার্ষিকপ্রতিরক্ষা সংক্রান্ত আলোচনার ব্যবস্থা করতে রাজি হয়েছে। 5. নেতৃবৃন্দভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামুদ্রিক লেনদেন সংক্রান্ত ক্ষেত্রে বর্ধিত সহযোগিতার জন্যগভীর মতবিনিময়ের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছেন। চুক্তিটিকে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে প্রতিরক্ষা সম্পর্কের গভীরতারপ্রতীক হিসাবে দেখা হচ্ছে। 7. উভয়নেতাই নিয়মিত যৌথ সামরিক মহড়ার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। তাঁরা ২০১৭’র এপ্রিলেফ্রান্সে ‘বরুণ’ নৌ-মহড়া এবং ২০১৮’র জানুয়ারিতে সেনাবাহিনীর ‘শক্তি’ নামে যৌথসামরিক মহড়ার সাফল্যকে স্বাগত জানিয়েছেন। উভয় দেশই আগামী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে‘বরুণ’ নৌ-মহড়া এবং ২০১৯-এ ফ্রান্সে ‘গরুড়’ নামে যৌথ বিমান বাহিনীর মহড়ার জন্যঅপেক্ষা করছে। উভয় পক্ষই যৌথ সামরিক মহড়ার উন্নত স্তর ও ভবিষ্যতে এই ধরনের মহড়ারকার্যকর গুণমান বজায় রাখার বিষয়ে তাদের দৃঢ় ইচ্ছা ব্যক্ত করেছে। এছাড়া, ভারতের মাজাগাঁও ডক শিপ বিল্ডার্স লিমিটেড-এ ফ্রান্সের‘ন্যাভাল গ্রুপ’ নামে জাহাজ নির্মাতা সংস্থার সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে নির্মিত প্রথমস্করপিন ডুবো জাহাজ আইএনএস কালভরি’র কর্ম সূচনা বিষয়েও উভয় পক্ষ আলোচনা করেছে। 9. উভয়েইদু’দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা উৎপাদনের ক্ষেত্রে বর্তমানে প্রচলিত অংশীদারিত্বকে আরওবাড়ানো ও গভীরতর করার বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার পক্ষে মতপ্রকাশ করেন। এর প্রেক্ষিতে উভয় নেতাই ভারত ও ফ্রান্সের বিভিন্নকোম্পানির মধ্যে যৌথ উদ্যোগকে স্বাগত জানান এবং আরও নতুন নতুন এই ধরনের উদ্যোগ গড়েউঠবে বলে অঙ্গীকার প্রকাশ করেন। উভয় নেতা সুস্পষ্টভাষায় জানান যে, সন্ত্রাসবাদকে কোনও ভাবেই যুক্তিগ্রাহ্য করা যাবে না, সে, ধর্ম,জাতি, জনগোষ্ঠি, যার ভিত্তিতেই হোক না কেন। ২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে দুই দেশসন্ত্রাসবাদ বিষয়ে যে যৌথ বক্তব্য রেখেছিল, তার কথা স্মরণ করে পৃথিবীর যে কোনওস্থানেই সন্ত্রাসবাদের অস্তিত্বকে নির্মূল করার বিষয়ে তাঁদের দৃঢ় আস্থা ব্যক্তকরেন। সন্ত্রাসবাদীদের অর্থের যোগান প্রতিরোধে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর আরও উদ্যোগনেওয়া প্রয়োজন বলে উভয় নেতাই একমত হন এবং ফরাসী সরকারের উদ্যোগে ২০১৮’র এপ্রিলেপ্যারিসে সন্ত্রাসবাদের অর্থের যোগান বন্ধে আন্তর্জাতিক সম্মেলন আয়োজনের বিষয়টিকেস্বাগত জানান। 15. ভারতও ফ্রান্সের মধ্যে ২০০৮ সালে শান্তিপূর্ণ কাজে পরমাণু শক্তি ব্যবহার বিষয়ে যেচুক্তি হয়েছিল, সেটি এবং ২০১৬’র জানুয়ারি মাসে এ বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তিঅনুসারে, ভারতে মহারাষ্ট্রের জয়িতাপুরে ৬টি পরমাণু চুল্লির কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতেএনপিসিআইএল এবং ইডিএফ-এর মধ্যে ‘ইন্ডাস্ট্রিয়াল ওয়ে ফরওয়ার্ড এগ্রিমেন্ট’ চুক্তিচূড়ান্ত হওয়ায় উভয় নেতাই সন্তোষ ব্যক্ত করেন। 16. ২০১৮’রশেষ দিকে জয়ীতাপুরে পরমাণু চুল্লির কাজের সূচনা করার লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে উভয়নেতাই পুনরায় প্রত্যয় ব্যক্ত করা এবং সংশ্লিষ্ট দু’দেশের সংস্থার মধ্যে চুক্তিসংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা ত্বরান্বিত করার বিষয়ে কথা বলেন। এরফলে, ২০৩০ সালের মধ্যেপুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির মাধ্যমে জীবাশ্ম জ্বালানিমুক্ত শক্তি উৎপাদনের ৪০ শতাংশলক্ষ্যমাত্রা পূরণ সম্ভব হবে। এই ধরনের বিদ্যুৎ উৎপাদনেরক্ষেত্রে প্রযুক্তি হস্তান্তর ও সরঞ্জামের স্থাণীয় পর্যায়ে উৎপাদন বিষয়ে সহযোগিতাবিষয়েও কথা হয়। 17. তাঁরাজয়িতাপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের ক্ষেত্রে দুর্ঘটনায় ক্ষতিপূরণ সংক্রান্তভারতের আইন-কানুনগুলি প্রয়োগ করার বিষয়ে সমঝোতাকে স্বাগত জানান। 20. প্রধানমন্ত্রীমোদী এবং প্রেসিডেন্ট ম্যাক্রঁ দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত, বিজ্ঞান, সাংস্কৃতিকএবং পর্যতন ক্ষেত্রে সম্পর্কের গভীরতায় সন্তোষ ব্যক্ত করেন। অর্থনৈতিক আদান-প্রদান 23. উভয়নেতাই ভারতে বেশ কয়েকটি নতুন উৎপাদনমূলক প্রকল্পে ফরাসী কোম্পানিগুলির যুক্তহওয়াকে স্বাগত জানান। ভারতে এই কোম্পানিগুলি গবেষণা ও উন্নয়নে যে বিরাট প্রকল্পহাতে নিয়েছে, তাতে তাঁরা সন্তোষ ব্যক্ত করেন। ফ্রান্সে ভারতীয় বিনিয়োগেরপ্রসঙ্গটিও সমানভাবে উত্থাপিত হয়। খ) ২০১৮’র মার্চ মাসে দিল্লিতে দু’দেশের সিইওফোরামের যৌথ সভাপতিরা যে নতুন সুপারিশগুলি করেছে, সেগুলিকে স্বাগত জানান। 25. অর্থনৈতিকএবং আর্থিক ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে গভীরতর করার ক্ষেত্রে প্রতি বছর একটি করে মন্ত্রীপর্যায়ের আলোচনা বৈঠক আয়োজনের ওপর উভয় নেতাই গুরুত্ব দেন। শিক্ষা এবংবিজ্ঞান-প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা 26. উভয়নেতাই সরকারি ব্যবস্থার মধ্যে শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা ও বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে সন্তোষ ব্যক্ত করেন এবং ২০২০ সালের মধ্যেউভয় দেশের ছাত্রছাত্রীর শিক্ষাগত সফর বিনিময়ের সংখ্যাকে ১০ হাজারে পৌঁছে দেওয়ারকথা বলেন। ২০১৮ সালের ১০-১১ মার্চ নতুন দিল্লিতে গবেষণা ও উচ্চ শিক্ষার বিষয়ে যে প্রথমভারত-ফ্রান্স সম্মেলন বা জ্ঞান সংক্রান্ত শিখর বৈঠক হয়েছে, উভয় নেতাই তাকে স্বাগতজানান। 27. উভয়দেশের ক্ষেত্রেই মানুষের দক্ষতার বিকাশকে একটি অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্র হিসাবেউল্লেখ করে উভয় নেতাই বিভিন্ন ফরাসী কোম্পানি ভারতে এদেশীয় শ্রমিক-কর্মচারীদের প্রশিক্ষণেরক্ষেত্রে যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে, তাকে স্বাগত জানান। উভয় পক্ষই দু’দেশেরদক্ষতা বৃদ্ধিকারী প্রতিষ্ঠান ও সংগঠনগুলির মধ্যে সহযোগিতার প্রাতিষ্ঠানিকব্যবস্থার পরিধিকে আরও বাড়ানোর কথা বলেন। 28. দুইনেতা গবেষণায় উৎসাহ দানের লক্ষ্যে ইন্দো-ফ্রেঞ্চ সেন্টার ফর প্রোমোশন অফঅ্যাডভান্স রিসার্চ (সিইএফআইপিআরএ) যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে, তাতে সন্তোষব্যক্ত করেন এবং ২০১৭ সালে এই সংস্থা ৩০তম বর্ষপূর্তিতে উভয়েই অভিনন্দন জানান। এইসংস্থাটি যাতে গবেষণা, বিপণন এবং সামাজিক প্রয়োজনের কাজে মৌলিক গবেষনারউদ্ভাবনগুলিকে প্রয়োগ করতে পারে, তার জন্য এই সংস্থাকে উৎসাহিত করেন। বিজ্ঞান,প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার পরিধি ও বিষয়কে আরও বাড়ানোরলক্ষ্যে উভয় নেতাই ২০১৮ সালের মধ্যে দু’দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত যৌথকমিটির বৈঠকের প্রয়োজনীয়তার কথাও বলেন। উভয়নেতাই ফ্রান্সে ভারত কর্তৃক বর্ষব্যাপী ‘India@70’নামে উৎসবের আয়োজনকে অভিনন্দন জানান। উভয় দেশ ২০২০ সালের মধ্যে ফ্রান্সে ১০ লক্ষ ভারতীয় পর্যটক এবংভারতে ৩ লক্ষ ৩৫ হাজার ফরাসী পর্যটক আগমনের লক্ষ্যমাত্রা গ্রহণ করেছে। তাঁরা ২০১৭ সালের১২ ডিসেম্বর প্যারিসে ‘এক গ্রহের শীর্ষ বৈঠক’ আয়োজনের সদর্থক অবদানের ওপর জোর দেন। 33. ফরাসীরাষ্ট্রপতি পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে বিশ্ব চুক্তির লক্ষ্যে উদ্যোগের প্রতি ভারতেসমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানান। আন্তর্জাতিক সৌর জোট 34. উভয়নেতাই আন্তর্জাতিক সৌর জোট সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি কার্যকর করার বিষয়টিকেস্বাগত জানান এবং নতুন দিল্লিতে ২০১৮’র ১১ মার্চ আন্তর্জাতিক সৌর জোটের প্রতিষ্ঠাসম্মেলন যৌথভাবে আয়োজনের আগ্রহ ব্যক্ত করেন। উভয় নেতা আন্তর্জাতিক সৌর জোটের আওতায়বিশাল পরিমাণ সৌর শক্তি উৎপাদনের জন্য সুলভ সহায়সম্পদ সংগ্রহের ওপর জোর দেন। 35. উভয়নেতাই পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে ভারত-ফ্রান্স প্রযুক্তিগত সহযোগিতার ওপরজোর দেন। তাঁরা সৌরশক্তির উন্নয়নে সরকারি ও বেসরকারি তহবিল সংগ্রহের গুরুত্বের কথাবলেন। 36. উভয়নেতাই ভারত ও ফ্রান্সের সুষম উন্নয়ন ও অর্থনৈতিক বৃদ্ধির জন্য কম গ্রিনহাউস গ্যাসনির্গমন যুক্ত দক্ষ পরিবহণ ব্যবস্থাকে একটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয় পূর্ব শর্ত হিসাবেচিহ্নিত করেন। বিদ্যুৎচালিত পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়নের লক্ষ্যে উভয় নেতাই তাঁদেরউচ্চাকাঙ্খার কথা বলেন। দিল্লিথেকে চণ্ডীগড়ের মধ্যে একটি মধ্য-উচ্চ গতির রেল যোগাযোগ সংক্রান্ত সম্ভাব্যতাসমীক্ষা সম্পূর্ণ হওয়া এবং আম্বালা থেকে লুধিয়ানা পর্যন্ত রেল স্টেশনগুলিরউন্নয়নের সম্ভাব্যতা সমীক্ষার কাজ সম্পূর্ণ হওয়ায় উভয়েই সন্তোষ ব্যক্ত করেন।দিল্লি-চন্ডীগড় সেক্টরের ট্রেনগুলির গতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উভয় পক্ষই ভবিষ্যতেটেকনিক্যাল সহযোগিতা সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। 40. নিরাপত্তাপরিষদের স্থায়ী সদস্য হিসাবে ভারতের প্রার্থী পদকে ফ্রান্সের পক্ষ থেকে পুনরায়সমর্থন জানানো হয়েছে। গণবিধ্বংসী পারমাণবিক অস্ত্রশস্ত্রের প্রসার রোধের ক্ষেত্রেভারত ও ফ্রান্স অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গীর অংশীদার। 41. ২০১৫সালের জুন মাসে ভারত ক্ষেপণাস্ত্র প্রযুক্তি সংক্রান্ত রাষ্ট্র জোটের এমটিসিআর-এর অন্তর্ভুক্তহয়েছে, ২০১৭’র ডিসেম্বরে ‘ওয়াসেনার অ্যারেঞ্জমেন্ট’ ২০১৭’র জানুয়ারিতে অস্ট্রেলিয়াগ্রুপের সদস্য হয়েছে। এছাড়া, অস্ট্রেলিয়াগ্রুপে ভারতের সদস্যপদ লাভের ক্ষেত্রে ফ্রান্সের সমর্থনের জন্যও তিনি ধন্যবাদজানান। বিশ্বব্যাপী পারমাণবিক শক্তির প্রসার রোধের উদ্যোগকে আরও শক্তিশালী করারলক্ষ্যে পারমাণবিক সরঞ্জাম সরবরাহকারী গোষ্ঠীতে ভারতের সদস্যপদের জন্য সদস্যরাষ্ট্রগুলির মধ্যে ঐকমত্য গড়ে তুলতে ফ্রান্স পুনরায় তাদের জোরালো সমর্থন ব্যক্তকরেছে। 43. ভারতও ফ্রান্স, ইরান ও ৬টি দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত পরমাণু শক্তি সংক্রান্ত যৌথকর্মপরিকল্পনা সম্পূর্ণভাবে রূপায়ণের ওপর জোর দেন। ইরান যে এই কর্মপরিকল্পনাসঠিকভাবে মেনে চলছে, এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক পরমাণু শক্তি সংস্থার বক্তব্যকে তাঁরাস্বীকৃতি দেন। রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ অনুমোদিত এই চুক্তিটি সম্পূর্ণভাবেরূপায়ণের মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক শান্তি, স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তা বজায় থাকবে এবংপরমাণু শক্তি প্রসার রোধের উদ্যোগেও উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবে বলে তাঁরা অভিমতপ্রকাশ করেন। তাঁরা রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের এই সংক্রান্ত প্রস্তাবটিসম্পূর্ণভাবে রূপায়ণের আহ্বান জানান। 46. ভারতও ফ্রান্স আজকের দিনে বিশ্বায়িত পৃথিবীর মধ্যে যোগাযোগের গুরুত্বের কথা স্বীকারকরেন। 47. ভারতও ফ্রান্স জি-২০ দেশগোষ্ঠীর সিদ্ধান্তগুলি রূপায়ণে তাঁদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে।অন্যান্য জি-২০ দেশগুলির মতো শক্তিশালী, সুষম এবং অন্তর্ভুক্ত বৃদ্ধির লক্ষ্যেএকযোগে কাজ করার কথাও দুই দেশ বলেছে। 48. বহুপাক্ষিকবাণিজ্যিক ব্যবস্থায় এবং মুক্ত ও অবাধ বাণিজ্য ব্যবস্থার উন্নয়নের ক্ষেত্রে তারগুরুত্বের ওপর তাঁরা জোর দেন। 49. ভারতও ফ্রান্স বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক ও আর্থিক প্রশাসন ব্যবস্থার উন্নয়ন, বিশ্বেরবিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে অসাম্য হ্রাস, অন্তর্ভুক্ত উন্নয়নে উৎসাহ প্রদান,সন্ত্রাসবাদ, ক্ষুধা, দারিদ্র্য, বেকারত্ব, জলবায়ু পরিবর্তন, শক্তি নিরাপত্তা এবংলিঙ্গ-ভিত্তিক অসাম্যের সমস্যা দূর করতে একযোগে কাজ করার কথা বলেন। ২০১৭ সালের জুন মাসেপ্যারিসে আফ্রিকা বিষয়ক প্রথম আলোচনা প্রসঙ্গে উভয় নেতা কয়েকটি অভিন্ন প্রকল্পরূপায়ণে তাঁদের আগ্রহের কথা জানান। 51. দুইনেতা ভারত মহাসাগরীয় দেশগুলির সংগঠন আইওআরএ’র প্রতি তাঁদের সমর্থন ব্যক্ত করেন। এইসংগঠনের কাজকর্মে সক্রিয়ভাবে উভয় দেশই সহযোগিতার আশ্বাস দেন। 52. বিভিন্নক্ষেত্রে উভয় দেশের নীতিগত অভিন্নতার প্রেক্ষিতে পূর্ব এশিয়া ও মধ্য এশিয়ার ওপরনিয়মিত বিশেষজ্ঞ পর্যায়ের আলাপ-আলোচনা শুরু করার বিষয়ে দুই নেতা একমত হন। দু’দেশেরবিদেশ মন্ত্রীদের মধ্যে একটি বার্ষিক নীতি ও পরিকল্পনা বিষয়ক আলোচনার ব্যবস্থাও চূড়ান্তহয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে নাগপুর মেট্রোর যাত্রার সূচনা করেন। এই মেট্রো রেলের খাপরি – সীতাবুলডি শাখার ১৩.৫ কিলোমিটার দীর্ঘ রেলপথের যাত্রাপথের সূচনা হয় ডিজিটাল পদ্ধতিতে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাগপুরের জনগণ এই মেট্রো পরিষেবার মাধ্যমে স্বল্প ব্যয়ে পরিবেশ-বান্ধব এবং উন্নত পরিবহণ ব্যবস্থায় সুফল পাবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাগপুরের উন্নয়নের জন্য ভবিষ্যতের চাহিদা মাথায় রেখে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকার একযোগে কাজ করে চলেছে। নাগপুর মেট্রো চালু হওয়া যুবসম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং শহরের বিকাশেও তা সাহায্য করবে। আরও ৮০০ কিলোমিটার মেট্রোরেলের কাজ চলছে। শ্রী মোদী জানান, বিশ্বে খুব কম দেশেই এই ধরণের মোবিলিটি কার্ড ব্যবস্থা চালু আছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার নানা সমস্যার সমাধানে সামগ্রিকভাবে চেষ্টা চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বারাণসীর দীনদয়াল হস্তকলা সঙ্কুলে উৎকর্ষ কেন্দ্রের উদ্বোধন করেছেন। শ্রী মোদী দীনদয়াল হস্তকলা সঙ্কুলের অ্যাম্পি থিয়েটারে পৌঁছনোর আগে এই বস্ত্র সংগ্রহালয়ের বিভিন্ন গ্যালারি ঘুরে দেখেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ‘কাশী : দ্য ইউনিভার্স অফ ক্র্যাফট্‌স অ্যান্ড টেক্সটাইলস্‌’ এবং ‘ইন্ডিয়ান টেক্সটাইলস্‌ : হিস্ট্রি, স্প্লেন্ডর এবং গ্রেন্ডিয়র’ শীর্ষক দুটি বই প্রকাশ করেন। গতএপ্রিল মাসে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরের সময় এই মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে| বাংলাদেশেরসঙ্গে কৌশলগত অংশীদারিত্ব গভীরতর করা, সেদেশে পরিকাঠামোগত উন্নয়নে এবং ভারত ওবাংলাদেশের মধ্যে যোগাযোগ উন্নত করার জন্য এই মউ| এর মধ্যে দিয়ে আমাদেরউত্তর-পূর্বাঞ্চলের অধিগম্যতা বৃদ্ধি পাবে এবং এর পাশাপাশি ভারতীয় কোম্পানিগুলিরক্ষেত্রে বাংলাদেশে বাণিজ্য করার এক নতুন সুযোগ তৈরি হবে| বাংলাদেশকেদেওয়া এই বিশেষ সুবিধার অর্থায়ন ব্যবস্থা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিকসম্পর্ককে শক্তিশালী করবে এবং সহযোগিতাকে উন্নত করবে| গুজরাটি লোকসঙ্গীত শিল্পী দিওয়ালিবেন ভিল-এর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “গুজরাটের বিশিষ্ট লোকসঙ্গীত শিল্পী দিওয়ালিবেন ভিল-এর মৃত্যু সংবাদে আমি শোকাহত। সাংস্কৃতিক জগতে তাঁর অবদান এক স্মৃতিস্তম্ভস্বরূপ।” নয়াদিল্লি, ১০ মার্চ, ২০১৫ কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর ৪৬তম প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বাহিনীর কর্মীদের সাহসিকতাকে অভিবাদন জানিয়েছেন। তিনি এক বার্তায় বলেছেন, শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর কর্মীরা যে সাহসিকতা ও কর্তব্যপরায়ণতার সঙ্গে বহু বছর ধরে দেশ সেবা করে চলেছেন, তার জন্য তিনি এই বাহিনীর প্রতিষ্ঠাদিবসে এই সংস্থার কর্মীদের অভিবাদন জানালেন। তিনি আরো জানান, ভারতের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থান এবং প্রতিষ্ঠানের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার মাধ্যমে দেশের অগ্রগতিতে শিল্প নিরাপত্তা বাহিনীর অবদান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এছাড়াও যুগ্মসচিব পর্যায়ের তিনটি পদ (এর মধ্যে একটি পদ প্রতিষ্ঠানের অধিকর্তা এবং আরও দুটি পদ অধ্যাপকের) সৃষ্টি করার ব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে। নতুন দিল্লিতে গত মার্চ মাসে এই মর্মে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। সমুদ্র থেকে উপকূলের দিকে আসা বায়ুকে বিদ্যুৎ উৎপাদনে ব্যবহার করার বিষয়ে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি এই চুক্তির অন্যতম উদ্দেশ্য। এর মাধ্যমে সমুদ্র উপকূলে বায়ুশক্তি সংক্রান্ত দক্ষ প্রযুক্তিগত ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা, উন্নত মানের উইন্ড টারবাইন বা বাতকল তৈরি, বায়ু প্রবাহ সংক্রান্ত পূর্বাভাস সহ পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (৭ জুলাই) রাজস্হানের জয়পুর সফরে যাবেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে- মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা লেঃজেঃ এইচ আরম্যাকমাস্টার আজ এখানে এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। সাক্ষাৎকারকালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের শুভেচ্ছাবার্তা শ্রীমোদীর কাছে পৌঁছে দেন লেঃজেঃ ম্যাকমাস্টার। প্রসঙ্গত, মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গেতাঁর দূরভাষ আলাপচারিতার ইতিবাচক দিকগুলির কথা স্মরণ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।কৌশলগত অংশীদারিত্বের প্রসারে এবং ভারত-মার্কিন সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করে তোলারওপর জোর দিয়েছিলেন দুই নেতাই তাঁদের আলাপচারিতাকালে । এনআইএমএইচআর দেশের মধ্যে প্রথম উন্নতমানের মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসার একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে গড়ে উঠবে। ২০১৬-র ১২ ডিসেম্বর ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উই-এর ভারত সফরের সময় দু দেশের যৌথ বিবৃতি স্মরণীয়। দুই দেশই শান্তি, স্হিতিশীলতা এবং উচ্চহারে অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও সমৃদ্ধির প্রত্যাশাকে তুলে ধরতে ভারত মহাসাগরীয় এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিজেদের মধ্যে মহাসাগরীয় সহযোগিতা আরও শক্তিশালী করতে আগ্রহী। এই দুটি মহাসাগরের মোট সামুদ্রিক এলাকা বিশ্বের সামুদ্রিক শিল্প-বাণিজ্যের জন্য বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই দুই দেশ রাষ্ট্রসঙ্ঘের সনদ, ১৯৮২ সালে সামুদ্রিক আইন সংক্রান্ত রাষ্ট্রসঙ্ঘের কনভেনশন এবং ১৯৭৬ সালে দঃপূঃ এশিয়ার মৈত্রী ও সহযোগিতা চুক্তি অনুসারে অধিকার ও দায়বদ্ধতার বিষয়গুলি মেনে চলে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সামুদ্রিক আইন এবং প্রাসঙ্গিক আন্তর্জাতিক আইনগুলিতে অন্তর্ভুক্ত সংস্হানগুলি মেনে চলার মাধ্যমে এই অঞ্চলের সামুদ্রিক জলদরিয়ায় সমুদ্রযাত্রার নিরাপত্তা বজায় রেখে শান্তি, স্হিতিশীলতার সুষম অর্থনৈতিক বিকাশ এবং উন্নয়ন সুনিশ্চিত করার প্রয়োজনীয়তা দুই দেশই স্বীকার করে। দুই দেশই নিজেদের মধ্যেকার দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে সার্বিক কৌশলগত অংশীদারিত্বের পর্যায়ে উন্নীত করাকে স্বাগত জানিয়ে দ্বিপাক্ষিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনা, ত্রিপাক্ষিক আলোচনা, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে বর্ধিত পরিধিসহ নতুন সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষর এবং শান্তিপূর্ণ উদ্দেশ্যে মহাকাশ অভিযান পরিচালনা এবং মহাকাশের ব্যবহার বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত ফ্রেমওয়ার্ক চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিকে উভয় দেশই স্বাগত জানিয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সমুদ্র সংক্রান্ত আইনে যে খোলা এবং মুক্ত সমুদ্রের কথা বলা হয়েছে এবং যা আন্তর্জাতিক গোষ্ঠী এবং এক একটি অঞ্চলের শান্তি, স্হিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন বলে উভয় দেশই মনে করে। উভয় দেশই ভারত মহাসাগর এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে মানুষ, অস্ত্রশস্ত্র, মাদক এবং অর্থপাচার বেআইনী এবং অনিয়ন্ত্রিতভাবে মাছ ধরা এবং সন্ত্রাসবাদীদের চলাচলের মতো সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে যে ইস্যুগুলি উঠে এসেছে তা মোকাবিলার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে। ভারতের ‘পূবে কাজ করো’ নীতি এবং এই অঞ্চলে সবার জন্য নিরাপত্তা ও বৃদ্ধি (সাগর), অন্যদিকে ইন্দোনেশিয়ার সামুদ্রিক নীতি এবং বিশ্বব্যাপী সমুদ্র নিরাপত্তার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় অবস্হানের দৃষ্টিভঙ্গি, দুই দেশের এই নীতিগুলির মধ্যে মিলগুলি খুঁজে বের করতে হবে এবং একইসঙ্গে আসিয়ানের ঐক্য ও প্রধান অবস্হানের প্রতি উভয় দেশই পুনরায় গুরুত্ব আরোপ করেছে। উভয় দেশই এই অঞ্চলের দেশগুলির সুষম অর্থনৈতিক বৃদ্ধি এবং উন্নয়ন সুনিশ্চিত করার ক্ষেত্রে নীল অর্থনীতির প্রধান ভূমিকাকে স্বীকার করে নিয়েছে। এই লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়ার জন্য উভয় দেশের নেতৃবৃন্দই ভারত মহাসাগরীয় এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বিভিন্ন সুযোগকে কাজে লাগাতে এবং সার্বিক কৌশলগত অংশীদার হিসাবে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে সামুদ্রিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির বিষয়ে একমত হয় এবং নিম্নলিখিত বিষয়ে কাজ চালিয়ে যেতে রাজি হন। ক) বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি : আমাদের অর্থনীতির সুষম উন্নয়নের জন্য দু দেশের মধ্যে এবং এই অঞ্চলের মধ্যে পণ্য-পরিষেবা বিনিয়োগ ও প্রযুক্তির প্রবাহ বৃদ্ধিতে উৎসাহদান। ভারতের আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ ও ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রা দ্বীপপুঞ্জের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক, বস্তুগত, ডিজিটাল ও মানুষে মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধির মাধ্যমে বাণিজ্য, পর্যটন বাড়ানোর উদ্যোগ, এছাড়া আন্দামান ও আচে সহ সুমাত্রা প্রদেশের বনিকসভাগুলির মধ্যে ব্যবসায়িক পর্যায়ে যোগাযোগে উৎসাহ প্রদানের বিষয়ে উভয় পক্ষ রাজি হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ভিত্তিতে মানব সম্পদ বিকাশের লক্ষে কাজ করে যাওয়া, সামুদ্রিক বাণিজ্য ও পরিবহনের নিরাপত্তা সুরক্ষিত রাখার পরিকাঠামো গড়ে তুলতে সহযোগিতা জোরদার করা, মৎস শিল্পের উন্নয়ন, টেকনিক্যাল সহযোগিতার মাধ্যমে সামুদ্রিক প্রাণীসম্পদ পরিচালন ব্যবস্হা গড়ে তোলা এবং এই ক্ষেত্রগুলিতে বিশেষজ্ঞ বিনিময়, যন্ত্রপাতির যোগান ও আর্থিক সহযোগিতা বিষয়েও দুই দেশ কাজ চালিয়ে যেতে রাজি হয়েছে। এছাড়া, সামুদ্রিক পরিবহনের জন্য পরিকাঠামো উন্নয়ন, সামুদ্রিক পরিবহন শিল্পকে উৎসাহদান, বিশেষ করে মৎস শিল্প ও জাহাজ নির্মাণ শিল্পের উন্নতি লক্ষে সহযোগিতা বিষয়েও দুই দেশ একমত হয়েছে। খ) সামুদ্রিক সম্পদের সুষম বিকাশে উৎসাহদান এছাড়া মৎস শিল্প সংক্রান্ত অপরাধমূলক যেসব কাজকর্ম বর্তমানে ক্রমাগত বৃদ্ধি পাচ্ছে ও সারা বিশ্বজুড়ে সামুদ্রিক পরিবেশের ক্ষতি করছে তা মোকাবিলা করা। অন্তর্ভুক্ত অর্থনৈতিক বৃদ্ধি ও কর্মসংস্হানের অন্যতম প্রধান উৎস হিসাবে নীল অর্থনীতিকে উৎসাহদান। দ্বিপাক্ষিক ও আঞ্চলিক পর্যায়ের সহযোগিতার মাধ্যমে সামুদ্রিক প্লাস্টিক দূষন মোকাবিলা। গ) প্রাকৃতিক দুর্যোগ মোকাবিলায় সহযোগিতার প্রসার ভূ-বদ্বীপীয় তথ্য বিনিময়, পদ্ধতি এবং পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং এই অঞ্চলের প্রাকৃতিক বিপর্যয় সংক্রান্ত ঝুঁকি এবং সম্ভাব্য বিপদ বিষয়ে পূর্বাভাস প্রদান ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে আগাম সাবধানতা সূচক ব্যবস্থার উন্নয়ন। ঘ) পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়ে উৎসাহদান : আঞ্চলিক পর্যায়ে অর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে উৎসাহিত করতে মানুষে মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধি। বীরেউইয়েন-এর আল-মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়, আচে’র লোকসেউমাউই-এর মালিকুসালেহ বিশ্ববিদ্যালয়, নতুন দিল্লীর জওহরলাল নেহরু বিশ্ববিদ্যালয়-এর মতো উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ গড়ে তোলা এবং পোর্ট ব্লেয়ারের উপযুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগের মাধ্যমে আল-মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সেন্টার অফ ইন্ডিয়া-ইন্দোনেশিয়া স্টাডিজ স্থাপন বিষয়েও দুই দেশ একমত হয়েছে। ঙ) সামুদ্রিক নিরাপত্তার উন্নয়ন : আসিয়ানের নেতৃত্বাধীন ব্যবস্থার অঙ্গ হিসাবে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে বর্তমানে প্রচলিত নিরাপত্তা কাঠামো শক্তিশালী করা। একটি উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্ত এবং স্বচ্ছ সহযোগিতা প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে এই অঞ্চলের সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির ব্যবস্থা করা। ২০০২ সালে দুই দেশের নৌ-বাহিনীর মধ্যে যে দ্বিপাক্ষিক সমন্বিত টহলদারি চালু হয়েছিল, সেই ব্যবস্থা সহ নৌ-সেনাদের কাজের ক্ষেত্রে প্রচলিত সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করা এবং দু’দেশের মধ্যে নিয়মিত দ্বিপাক্ষিক নৌ-মহড়া চালু করা। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিষয়ে তথ্য বিনিময় বাড়ানো। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সমুদ্র সংক্রান্ত আইন সহ অন্যান্য আন্তর্জাতিক আইনসমূহের নীতির ভিত্তিতে দু’দেশের মধ্যে সামুদ্রিক সীমানা নির্ধারণের ক্ষেত্রে উভয় দেশের পক্ষে গ্রহণযোগ্য সমাধানের জন্য দ্রুত আলোচনা চালাতে টেকনিক্যাল পর্যায়ের বৈঠক আয়োজন এবং প্রচলিত নৌ-সীমানা চুক্তিকে শক্তিশালী করা। দু’দেশের মধ্যে বিশেষজ্ঞ পর্যায়ে সামুদ্রিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত কৌশলগত ও টেকনিক্যাল সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য নতুন পথ খুঁজে বের করা এবং আরও ভালোভাবে সামুদ্রিক নিরাপত্তা বিষয়ে সচেতনতা গড়ে তোলা। জল-বিজ্ঞান এবং সামুদ্রিক মানচিত্রায়নের ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় কাজ চালিয়ে যাওয়া। ইন্ডিয়ান রিম অ্যাসোসিয়েশন অর্গানাইজেশন-এর ব্যবস্থাগত গণ্ডীর মধ্যে ভারত মহাসাগরকে নিরাপদ করে তোলার জন্য সহযোগিতা জোরদার করা। চ) শিক্ষাগত, বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা জোরদার করা : বহির্মহাকাশ থেকে পৃথিবীর পরিবেশের ওপর নজরদারি ও দূরসংবেদী ব্যবস্থার ক্ষেত্রে, ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংগঠন (ইসরো) এবং ইন্দোনেশিয়ার ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যারোনটিক্স অ্যান্ড স্পেস (লাপান)-এর মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি। পরে, ২০১৪ সালে ইথানল মিশ্রণের কর্মসূচির একটি দিশা স্থির করা হয়। শ্রী মোদী বলেন, দেশে ১২টি আধুনিক শোধনাগার স্থাপনের একটি পরিকল্পনা করা হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশে প্রভূত কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জন ধন’, ‘বন ধন’ এবং ‘গোবর্ধন’-এর মতো কর্মসূচিগুলি আদিবাসী, কৃষক এবং সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় বিশেষ পরিবর্তন নিয়ে আসবে। ছাত্র, শিক্ষক, বিজ্ঞানী, শিল্পোদ্যোগী এবং জনসাধারণের অংশগ্রহণের মাধ্যমেই যে রূপান্তরের সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করা সম্ভব, একথা বিশেষ জোরের সঙ্গে ঘোষণা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। জৈব জ্বালানির সুফলগুলিকে গ্রামাঞ্চলে পৌঁছে দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহণের জন্য তিনি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী এদিন ‘জাতীয় জৈব জ্বালানি নীতি, ২০১৮’ শীর্ষক একটি পুস্তিকাও প্রকাশ করেন। উদ্বোধনী ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পিতৃপুরুষদের মাতৃভূমির প্রতি ভালোবাসা ও আন্তরিকতার টানেই প্রবাসী ভারতীয়রা এদেশে এসেছেন। এক নতুন ভারত গঠনে তিনি প্রবাসী ভারতীয়দের হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম্‌’ বা সমগ্র বিশ্বই এক পরিবার – প্রাচীন ভারতীয় এই ঐতিহ্য বজায় রাখতে শ্রী মোদী প্রবাসী ভারতীয়দের ভূমিকার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, প্রবাসী ভারতীয়রা কেবল ভারতের ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসাডারই নন, এরা ভারতের শক্তি, সক্ষমতা ও চারিত্রিক গুণাবলীর প্রতীক। তিনি এক নতুন ভারত গঠনে, বিশেষ করে গবেষণা ও উদ্ভাবন ক্ষেত্রে সহযোগিতার ও অংশগ্রহণের জন্য অনাবাসী ভারতীয়দের আহ্বান জানান। মেক ইন ইন্ডিয়া কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা অনেকটাই অগ্রগতি করেছি। রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন আমাদের অন্যতম একটি সাফল্য। প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, বিগত সরকারের ইচ্ছাশক্তির অভাব এবং উপযুক্ত নীতি-পঙ্গুত্বের দরুণ বিপুল পরিমাণ তহবিলের সুযোগ-সুবিধা থেকে প্রাপ্য সুফলভোগীরা বঞ্চিত হয়েছেন। অবশ্য, আজ আমরা প্রশাসনিক ব্যবস্থার খামতিগুলি প্রযুক্তিগত সহায়তার মাধ্যমে কমিয়েছি। সমস্ত প্রবাসী ভারতীয়কে পাসপোর্ট সেবার সঙ্গে যুক্ত করা হচ্ছে এবং এদের চিপ-ভিত্তিক ই-পাসপোর্ট দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রবাসী তীর্থ দর্শন যোজনা গ্রহণ করা হচ্ছে। এই যোজনায় তিনি পাঁচটি বিদেশি পরিবারকে ভারত সফরে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রত্যেক প্রবাসী ভারতীয়কে আহ্বান জানান। গান্ধীজী এবং গুরু নানক দেবজীর মূল্যবোধ ও আদর্শ প্রচারে অনাবাসী ভারতীয়দের অনুরোধ জানিয়ে শ্রী মোদী তাঁদেরকে গান্ধীজী ও গুরু নানকের জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে সামিল হওয়ার আহ্বান জানান। বাপুর পছন্দের ‘বৈষ্ণবজন’ ভজনটিকে সমগ্র বিশ্ব সাদরে স্বাগত জানানোয় আমরা গর্ব অনুভব করছি বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। এবারের প্রবাসী ভারতীয় দিবসের প্রধান অতিথি মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী প্রবীন্দ জগন্নাথ প্রবাসী ভারতীয়দের পিতৃপুরুষদের মাতৃভূমির সঙ্গে সম্পর্ক ও স্মৃতিকথার বিভিন্ন প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। হিন্দি ও ইংরাজিতে তাঁর ভাষণে শ্রী জগন্নাথ বলেন, এ ধরণের সমাবেশ অভিন্ন ইতিহাস ও সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত পরিবারের এক সদস্য হিসাবে প্রবাসী ভারতীয়দের পরিচিতিকে আরও মজবুত করে। তিনি বলেন, ভারত যদি অনন্য হয়, তবে ভারতীয়ত্ব সর্বজনীন। এক শিক্ষিত ও আত্মনির্ভরশীল প্রবাসী মানুষের সংগঠন দেশ গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। ভোজপুরি উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সমবেত মানুষের মন জয় করে তিনি ঘোষণা করেন যে, মরিশাস প্রথম আন্তর্জাতিক ভোজপুরি উৎসবের আয়োজন করবে। অনুষ্ঠানের স্বাগত ভাষণে বিদেশ মন্ত্রী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মোদীর অনন্য সাধারণ চারিত্রিক দৃঢ়তাসম্পন্ন নেতৃত্বের দরুণ ভারত আজ গর্বিত। মাতৃভূমির সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য তিনি প্রবাসী ভারতীয়দের ধন্যবাদ দেন। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ বলেন, প্রবাসী ভারতীয় দিবস এবং কুম্ভমেলা এই দুটি উৎসব একসঙ্গে উত্তর প্রদেশে আয়োজন ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর রূপকেই প্রতিফলিত করে। প্রধানমন্ত্রী ‘ভারতকে জানুন’ শীর্ষক ক্যুইজ প্রতিযোগিতার বিজয়ীদের সংবর্ধিত করেন। তরুণ প্রজন্মের অনাবাসী ভারতীয়দের জন্য এই ক্যুইজ প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়। প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলন শেষে ২৪ জানুয়ারি সফররত অনাবাসী ভারতীয়দের প্রতিনিধিদল প্রয়াগরাজে কুম্ভমেলায় যাবেন। এই কর্মসূচি রূপায়ণের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় দক্ষতা বিকাশ ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রকের। শিক্ষানবিশ নিয়োগের জন্য নিয়োগকর্তাদের নানাভাবে উৎসাহিত করা হবে। এই কর্মসূচির আওতায় শিক্ষানবিশদের স্টাইপেন্ড দেওয়ার ক্ষেত্রে ২৫ শতাংশ ব্যয়ভার বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। শিক্ষানবিশ নিয়োগের ক্ষেত্রে নিয়োগকর্তাদের সরকারিভাবে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা দানের ব্যবস্থা এই প্রথম চালু হচ্ছে। শুধু তাই নয়, এর আওতায় প্রাথমিক প্রশিক্ষণ দানের ব্যবস্থাও রয়েছে। এই আধিকারিকরা সহকারী সচিব হিসেবে কেন্দ্রীয় সরকারের কাজে প্রথম তিনটি মাস সম্পূর্ণ করেছেন। এই ব্যাচটিই হল প্রথম যাঁরা কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে তাঁদের কর্মজীবন শুরু করলেন। সাফল্যের মূল চাবিকাঠি হল জনসাধারণের মধ্যে সংহতির মানসিকতা গড়ে তোলা। কেন্দ্রীয় সরকারের সকল মন্ত্রক ও দপ্তরের সচিবরা ছাড়াও প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারকালে উপস্থিত ছিলেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ এবং শ্রী মনোহর পাররিকর। স্বাক্ষরিত মউ-এর আওতায় এক নিবিড় অর্থনৈতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতার বাতাবরণ গড়ে উঠবে ভারত ও সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর মধ্যে। ক) এনআরএলএম-এর রুপায়ণ কাঠামোয় পরিবর্তন: ১) আর্থ-সামাজিক ও জাতি ভিত্তিক সুমারি এবং এসইসিসি ডেটাবেস ব্যবহারের মাধ্যমে এবং অন্যান্য সামাজিক বিষয়ের প্রেক্ষাপটে দারিদ্র্য দূরীকরণে পরিকল্পনা| এসইসিসি ডেটাবেস সরকারকে গ্রামীণ এলাকায় দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রকল্পগুলি আরও বেশি করে প্রকৃত সুবিধাভোগীদের কাছে পৌঁছে দেবে| এসইসিসি ডেটা ব্যবহারের মাধ্যমে এনআরএলএম-এ পঞ্চায়েতিরাজ সংস্থা ও স্ব-সহায়ক দলগুলিকে যুক্ত করে দারিদ্র্যমুক্ত পঞ্চায়েতের জন্য পরিকল্পনা নেওয়া হবে| অ) যেসব নতুন জেলাকে ইন্টিগ্রেটেড অ্যাকশন প্লান বা আইএপি হিসেবে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে এবং এর মধ্যে যেগুলি আগের ১৫০ টি জেলার তালিকায় নেই, সেগুলি এবার যুক্ত হবে| ৪) এনআরএলএম-এর জন্য পেশাগত পরিচালনা খরচ (প্রশাসনিক খরচ)| অ) এনআরএলএম-এর ক্ষেত্রে পেশাগত পরিচালনা খরচ (প্রশাসনিক ব্যয়) ৬ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি| আ) দীন দয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনায় দক্ষতা উন্নয়ন ও কর্মসংস্থানকে এনআরএলএম-এর প্রশাসনিক ব্যয় হিসেবে দেখা হবে| ই) এনআরএলএম-এর অধীনস্ত মানব সম্পদ উন্নয়ন অংশটি বিশ্বব্যাঙ্কের সঙ্গে এর রূপায়ন পরিকল্পনা ও আর্থিক চুক্তি অনুসারে উর্ধ সীমার আওতার বাইরে থাকবে| অরুনাচলপ্রদেশের তাওয়াং-এ সশ্রস্ত্র সীমাবলের (এসএসবি) ৫.৯৯ একর জমি বড়মাপের অনুষ্ঠান আয়োজন তথা অন্যান্য উদ্দেশ্যে কাজে লাগানোর জন্য রাজ্য সরকারকে দেওয়ার বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে “যক্ষ্মার অবসান” সূচক শীর্ষ বৈঠকের উদ্বোধনীঅধিবেশনে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রীএ প্রসঙ্গে ঘোষণা করেন যে, বিশ্বের ২০৩০ সালের লক্ষ্যমাত্রার পরিপ্রেক্ষিতেভারতবর্ষ ২০২৫ সালের মধ্যেই যক্ষ্মাকে নির্মূল করার লক্ষ্য নিয়েছে। তিনি বলেন,সরকার এই লক্ষ্য পূরণে পূর্ণাঙ্গভাবে কাজ করে চলেছে। রাজ্য সরকারগুলির এক্ষেত্রেএকটা বড় ভূমিকা রয়েছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তিনি নিজে ব্যক্তিগতভাবেসব মুখ্যমন্ত্রীকে এই অভিযানে সামিল হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে চিঠি দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, অগ্রণী যক্ষ্মা বিশেষজ্ঞ ও কর্মীরা এই প্রয়াসের এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ। যে সবরোগীরা এই যক্ষ্মা রোগকে জয় করেছেন, তাঁরাও অন্যদের উৎসাহিত করতে পারেন বলেপ্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। শুভ সন্ধ্যা ক্যালিফোর্নিয়া, কোডারমা-হাজারিবাগ নতুন রেল লাইনটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করে এবং হাজারিবাগ ও কোডারমার মধ্যে ডেম্যু ট্রেন পরিষেবার সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছিলেন। কোডারমা-হাজারিবাগ রেল লাইন প্রকল্পের জন্য যে কৃষকরা জমি দিয়েছেন তাদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য এই কৃষকরা ব্যাপক অবদান রেখেছেন। তিনি বলেন, এই রেল লাইন কেবলমাত্র পরিবহণের একটি মাধ্যমই নয়, বরং ভারতীয় অর্থনীতির মেরুদণ্ড হয়ে উঠতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝাড়খন্ডকে তার নিজস্ব সমৃদ্ধি বাড়াতে খনিজ সম্পদের জন্য রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার ওপর আরও বেশি করে নজর দিতে হবে। এই রাজ্যে রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পূর্ণ সহায়তা দেওয়ার জন্য তিনি ঝাড়খন্ডবাসীকে আহ্বান জানান। এখনও পর্যন্ত ১৫টি কয়লা ব্লক নিলাম করে ৭৫ হাজার কোটি টাকা আয় হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর অঙ্গীকারের কথা পুনরায় উল্লেখ করে বলেন, তিনি কোনভাবেই দুর্নীতিকে প্রশ্রয় দেবেন না। দারিদ্র্য দূর করতে গরিব মানুষদের সুযোগসুবিধা প্রদানের প্রয়োজন রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এই উপলক্ষে ঝাড়খন্ডের রাজ্যপাল শ্রী সৈয়দ আহমেদ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী রঘুবীর দাস সহ রেলমন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভু, রেল প্রতিমন্ত্রী শ্রী মনোজ সিনহা, গ্রামোন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী শ্রী সুদর্শন ভগৎ ও অর্থ প্রতিমন্ত্রী শ্রী জয়ন্ত সিনহা উপস্থিত ছিলেন। ভারতের রাষ্ট্রপতির উপস্থিতিতে শনিবার ফ্লিট রিভিউ এবং ফ্লাই পাস্টের মাধ্যমে ভারতীয় নৌ-বাহিনি তাদের শৌর্য প্রদর্শন করল, এবং এর পাশাপাশি সারা বিশ্বের নৌ-সেনাদের নিয়ে এল এক জায়গায়। প্রধানমন্ত্রী ম্যারিরটাইম প্রদর্শনী পরিদর্শন করেছেন, যেখানে ভারতীয় নৌ-বাহিনির দেশজ প্রযুক্তিগত দক্ষতা তুলে ধরা হয়েছে। এছাড়াও তিনি প্রদর্শনী এলাকাতেই শিল্পকলা ও হস্তকারু প্রদর্শনী পরিদর্শন করেন, এখানে সারা ভারতের কারুশিল্পীরা তাদের উৎপাদিত সামগ্রী উপস্থাপনা করেছে। প্রধানমন্ত্রী ‘ইন্ডিয়ান নেভি সিম্ফনিক অর্কেস্ট্রা’-র দ্বারা উপস্থাপিত ‘প্রেসিডেন্সিয়াল ব্যান্ড কনসার্ট’-এ উপস্থিত ছিলেন। দেশে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং পরিকাঠামোর প্রসারের দিকে লক্ষ্য রেখে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতিটিতে আজ ব্যাপক পরিবর্তননিয়ে আসা হল। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত উচ্চ পর্যায়ের এক বৈঠকে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতিকে আরও উদার করে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। গত বছর নভেম্বরে ঘোষিত এ সম্পর্কিত ব্যাপক পরিবর্তনের পর এটিই হল দ্বিতীয় বড় ধরনের সংস্কার। এখন থেকে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়টিতে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে অনুমোদন দেওয়া হবে। ‘অর্থ সঞ্চয়’কে একটি অভ্যাসে পরিণত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, এর জন্য ‘স্বনির্ভর মহিলা গোষ্ঠী’গুলির সাফল্যের দৃষ্টান্ত থেকে ব্যাঙ্কগুলিকে অনুপ্রেরণা পাবে। জ্ঞান ও নৈপুণ্য – আজকের যুবসম্প্রদায়ের এই দুটি প্রয়োজনের কথা ব্যাঙ্কগুলির বিশেষভাবে নজর দেওয়া প্রয়োজন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। এ ব্যাপারে তিনি ‘মুদ্রা ব্যাঙ্ক’ – এর উদ্যোগেরও দৃষ্টান্ত দেন। কৃষকদের আত্মহত্যা প্রতিরোধে ‘অর্থ সঞ্চয়’ – এর মতো নতুন ভাবনা নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য প্রধানমন্ত্রী ব্যাঙ্কগুলির প্রতি আহ্বান জানান। অর্থ সঞ্চয়ে উৎসাহ দিতে ভৌগোলিক মানদন্ডের পাশাপাশি আর্থিক ও সামাজিক মানদন্ডের বিষয়টি মাথায় রাখা উচিত বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। বিগত ৮০ বছর ধরে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্কের উল্লেখযোগ্য ভূমিকার প্রশংসা করে, প্রধানমন্ত্রী ব্যাঙ্কের কাজকর্মে দৃষ্টান্তস্বরূপ অবদানের জন্য ব্যাঙ্কের গভর্নর ডঃ রঘুরাম রাজনকে অভিনন্দন জানান। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের অঙ্গ হিসেবে, নোট ছাপানোর প্রয়োজনীয় কাগজ ও কালি যাতে ভারতেই তৈরি করা যায়, তার জন্য উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নেবার জন্য প্রধানমন্ত্রী রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে আহ্বান জানান। আজকের অনুষ্ঠানে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী বিদ্যাসাগর রাও, মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফাদনাবিশ, অর্থমন্ত্রী শ্রী অরুণ জেটলি এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর ড. রঘুরাম রাজন উপস্থিত ছিলেন। বৃহস্পতিবার কেন্দ্রীয়সচিবদের একটি দল কৃষি সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের চিন্তাভাবনা, প্রস্তাব ওপরামর্শ সম্বলিত একটি উপস্থাপনা পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে। বিভিন্নদপ্তরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং নীতি আয়োগের আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন সচিবদেরউপস্থাপনাকালে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে আজ (২৩শে জানুয়ারি) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা দিলশাদ গার্ডেন থেকে গাজিয়াবাদের নয়া বাস আড্ডা পর্যন্ত দিল্লি মেট্রো করিডর সম্প্রসারণের বিষয়টি অনুমোদন করেছে। এই মেট্রো করিডরের মোট দূরত্ব হবে ৯.৪১ কিলোমিটার। ভারত এবং ভিয়েতনামের মধ্যে যৌথ কর্মসূচির মাধ্যমে প্রাণী-স্বাস্থ্য বিষয়ে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোই এই ‘মৌ’ –এর লক্ষ্য। গত ১২ ডিসেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রী মিঃ আবে-র ভারত সফরকালে জাপানের সঙ্গে এ সম্পর্কিত একটি চুক্তিতে আবদ্ধ হয় ভারত। ৮৩ জন জাতীয় সদস্যকে নিয়ে গঠিত এক জেনারেলঅ্যাসেম্বলি আইএএলএ-এর পরিচালন কর্তৃপক্ষের দায়িত্ব পালন করে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার মিস্টার ম্যালকম টার্নবুলের সঙ্গে কথা বলেন এবং অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী পদে তাঁর নিযুক্তির জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৭২তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। আত্মবিশ্বাসে ভরপুর বর্তমান ভারতের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী ছয় জন যুবা মহিলা নৌ-সেনা আধিকারিকের সফলভাবে সমুদ্রপথে বিশ্ব পরিক্রমা এবং অতি সাধারণ জায়গা থেকে উঠে আসা তরুণ ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের সাফল্যের কথা বিশেষভাবে তুলে ধরেন। নীলগিরি পর্বতমালায় প্রস্ফুটিত ‘নীলাকুরুঞ্জি’ ফুলের কথা উল্লেখ করে তিনি এর বিশেষত্ব ব্যাখ্যা করে জানান, ঘটনাচক্রে প্রতি ১২ বছরে একবার এই ফুল ফোটে। সংসদের সদ্যসমাপ্ত অধিবেশনকে সামাজিক ন্যায়-বিচারের স্বার্থে উৎসর্গ করা হয়েছিল বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, ভারত এখন বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা সংগ্রামী ও শহীদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। তিনি নিরাপত্তা বাহিনীগুলির জওয়ান ও পুলিশ কর্মীদের সেলাম জানান। দেশের বিভিন্ন অংশে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য তিনি সমবেদনা প্রকাশ করেন। বিশিষ্ট কবি সুব্রামনিয়াম ভারতীকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত সমগ্র বিশ্বকে সব ধরণের বাধা-বিপত্তি থেকে মুক্তির পথ দেখাবে। অগণিত স্বাধীনতা সংগ্রামী এই স্বপ্ন দেখেছিলেন। এমনকি, একটি জাতির এই স্বপ্ন পূরণে বাবাসাহেব আম্বেদকর এক সুসংবদ্ধ সংবিধান রচনা করেছিলেন, যেখানে গরিব মানুষের জন্য ন্যায়-বিচার এবং সার্বিক অগ্রগতির ক্ষেত্রে সকলের সমান সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তিনি আরও বলেন, রাষ্ট্র গঠনে ভারতীয়রা একজোট হয়ে এগিয়ে আসছেন। শৌচাগার নির্মাণ, গ্রামীণ বৈদ্যুতিকীকরণ সহ রান্নার গ্যাসের সংযোগ, গৃহনির্মাণ প্রভৃতি ক্ষেত্রে উন্নয়নের গতির কথাও তিনি দৃষ্টান্ত-স্বরূপ উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার কৃষকদের স্বার্থে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি, অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) এবং এক পদ – এক পেনশন চালু সহ এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা দীর্ঘদিন ধরে পড়ে ছিল। কেন্দ্রীয় সরকার জাতীয় স্বার্থকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়ার ফলেই এগুলি সম্ভব হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। আন্তর্জাতিক সংগঠন ও প্রতিষ্ঠানগুলি ২০১৩-র তুলনায় কেন আজ ভারতকে পৃথক দৃষ্টিভঙ্গীতে দেখছে, সে কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘নীতি পঙ্গুত্বে’র সময় পার করে ভারত ‘সংস্কার, কার্যসম্পাদন ও রূপান্তরের’ দিশায় অগ্রসর হয়েছে। ভারত এখন একাধিক গুরুত্বপূর্ণ বহুপাক্ষিক সংগঠনের সদস্য এবং আন্তর্জাতিক সৌর জোটকে নেতৃত্ব দিচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল বর্তমানে ক্রীড়া ক্ষেত্রে সাফল্য, সংযোগ বিহীন শেষতম গ্রামটিতে বিদ্যুতায়ন এবং জৈব চাষাবাদের অন্যতম কেন্দ্র হয়ে ওঠার জন্য সংবাদ শিরোনামে উঠে আসছে। মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে ১৩ কোটি ঋণ সহায়তা দেওয়ার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, এই ঋণ সহায়তার মধ্যে ৪ কোটি এমন সুফলভোগী মানুষ রয়েছেন, যাঁরা প্রথমবার ঋণ সহায়তা পেলেন। ভারতের এই প্রচেষ্টা সফল হলে বিশ্বের চতুর্থ দেশ হয়ে উঠবে বলেও তিনি জানান। ২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের উপার্জন দ্বিগুণ করার কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই লক্ষ্য পূরণ অত্যন্ত কঠিন বলে প্রতিপন্ন হলেও তা সম্পাদনের সর্বাতমক প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, উজ্জ্বলা যোজনা ও সৌভাগ্য যোজনার মতো উদ্যোগগুলি সাধারণ মানুষের মর্যাদা বাড়াচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-এর মতো মর্যাদাপূর্ণ প্রতিষ্ঠান ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এর প্রশংসা করেছে। পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মতিথি অর্থাৎ এ বছরের ২৫ সেপ্টেম্বর ‘প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য অভিযান’-এর সূচনার কথাও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন। তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভারতের গরিব মানুষজনের কাছে গুণগত মানের ও সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার এটাই উপযুক্ত সময়। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০ কোটি ভারতবাসী বিশেষভাবে লাভবান হবে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। প্রায় ৬ কোটি নকল উপভোক্তাকে বাদ দিয়ে কিভাবে সুনির্দিষ্ট উপভোক্তাদের সুযোগ-সুবিধা প্রদান অর্জন করা সম্ভব হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সেকথাও বিশদে ব্যাখ্যা করেন। দেশের সার্বিক বিকাশে সৎ করদাতাদের বড় ভূমিকা রয়েছে বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, কেবল এই সৎ করদাতাদের জন্যই অসংখ্য মানুষের অন্নের সংস্থান হয় এবং গরিব মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে। প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, দুর্নীতি ও কালো টাকাধারীদের কোনওভাবেই ক্ষমা করা হবে না। প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, এখন থেকে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনীগুলিতেও অস্থায়ীভাবে কর্মরত মহিলা আধিকারিকদের পারদর্শিতা প্রমাণ প্রক্রিয়ার মাধ্যমে মানোন্নয়ন করে স্থায়ীকরণের যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। তিন তালাক প্রথা মুসলিম মহিলাদের প্রতি ঘোরৎর অন্যায় বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দিয়ে বলেন, তাঁরা যাতে ন্যায়-বিচার পান সেজন্য তিনি কাজ করে যাবেন। দেশে উগ্র-বামপন্থাবাদ হ্রাসের কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের জন্য প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর ‘ইনসানিয়ত, জামহুরিয়ত এবং কাশ্মীরীয়ত’ পরিকল্পনার কথাও তিনি পুনরায় স্মরণ করেন। তিনি সকলের জন্য গৃহ, সকলের জন্য বিদ্যুৎ, সকলের জন্য দূষণমুক্ত রান্নার জ্বালানি, সকলের জন্য জল, সকলের জন্য সুস্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য বিধান, সকলের জন্য দক্ষতা, সকলের বিমা ব্যবস্থা ও সার্বিক যোগাযোগ গড়ে তোলার ওপর বিশেষ জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহরুর জন্মবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন- “আমাদের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পন্ডিত জওহরলাল নেহরুকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে স্মরণ করছি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বৃদ্ধিতে উভয়ই সন্তোষ প্রকাশ করেন। ভারতের ক্ষুদ্র দ্বীপগুলিকে স্মার্ট দ্বীপ হিসাবে গড়ে তোলার বিষয়েও গুরুত্ব দেওয়া হয়। 6. ভারতের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে জাপানের গুরুত্বপূর্ণ অবদানের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের সামাজিক ও শিল্প ক্ষেত্রের উন্নয়নে জাপানের সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী আবে। মুম্বাই – আমেদাবাদ উচ্চ গতির রেল প্রকল্প সহ নানা কাজকর্মের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন তাঁরা। উল্লেখ্য, এই রেল প্রকল্পটি ভারত – জাপান সহযোগিতার বিশেষ পরিচায়ক। জাপানের সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে উন্নত প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বিনিয়োগের বিষয়েও দুই দেশ সহমত হয়েছে। দুই দেশের জনগণের মধ্যে সম্পর্ক তৈরিতে পর্যটনকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়। উচ্চ শিক্ষা ও নারী শক্তির ক্ষমতায়নে এবং তরুণ ক্রীড়াবিদদের মধ্যে আদান-প্রদানে ভারত – জাপান সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সম্মত হয়। এতে প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ে আলোচনা, জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের আলোচনা, প্রতিরক্ষা নীতি-নির্ধারণ বিষয়ক আলোচান প্রভৃতি অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। 16. উভয় নেতা মহাকাশ গবেষণা ক্ষেত্রে দীর্ঘ মেয়াদী সুস্থিত সম্পর্ক চালুর ওপর জোর দেন। দুই নেতা ২০০৮ সালের নভেম্বর মাসে মুম্বাইতে এবং ২০১৬ সালে জানুয়ারি মাসে পাঠানকোটে জঙ্গী হামলার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের অবিলম্বে পাকিস্তান যেন শাস্তি দেয়, সেই আবেদনও জানান। আলকায়দা, জয়স-ই-মহম্মদ, লস্কর – এ তৈবা এবং আইএসআইএস – এর মতো জকঙ্গী গোষ্ঠীগুলির হুমকির চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে সম্মত হন। 20. ভারত ও জাপান রাষ্ট্রসংঘের পুনর্গঠনের দাবি জানায়, বিশেষ করে একুশ শতকের সঙ্গে সাযুজ্য রেখে রাষ্ট্রসংঘ নিরাপত্তা পরিষদকে আরও কার্যকর করে তুলতে এর যথাযথ পুনর্গঠনের ওপর জোর দেন তাঁরা। পরিবেশ দূষণ, বর্জ্য নিয়ন্ত্রণ, জলবায়ু পরিবর্তন এবং পয়ঃপ্রণালীর জল নিয়ন্ত্রণের মতো বিষয়গুলিতে অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করতে হবে বলে তাঁদের অভিমত। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলায় রাষ্ট্রসংঘের জলবায়ু চুক্তির অন্তর্গত আন্তর্জাতিক স্তরে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন বলেও শ্রী মোদী এবং শ্রী আবে মনে করেন। 23. উভয় নেতা বিপর্যয়ের সম্ভাবনা কম করতে বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক কর্মশালা আয়োজন ও সহযোগিতার বিষয়টি খতিয়ে দেখতে সন্তোষ প্রকাশ করেন। ২০১৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে বিপর্যয়ের সম্ভাবনা কম করার জন্য সেন্দাই কাঠামো কার্যকর করার ওপর গুরুত্ব দেন তাঁরা। 24. অবাধ ও মুক্ত বাণিজ্যের জন্য ডব্লুউটিও-র পুনর্গঠনে জোর দেন তাঁরা। অবৈধ বাণিজ্য বন্ধ করতে ও এর চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় ভারত ও জাপান একযোগে কাজ করতে সম্মত হয়েছে। ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে আঞ্চলিক স্তরে অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি কার্যকর করার বিষয়েও দুই প্রধানমন্ত্রী সম্মত হন। সাম্প্রতিককালে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক এক নতুন মাত্রা পেয়েছে বলে স্বীকার করে নেন দুই প্রধানমন্ত্রী। জলসম্পদের বিকাশ ও ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে ভারত ও তানজানিয়ার মধ্যে একটি মউ স্বাক্ষরের প্রস্তাব বুধবার অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এই মউ স্বাক্ষরের আওতায় যে বিষয়গুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হচ্ছে তার মধ্যে রয়েছে কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রে জলের ব্যবহার, ভূ-স্তর ও ভূ-গর্ভের জলসম্পদের ব্যবস্থাপনা এবং জলের সঞ্চয়। গত ১৮ সেপ্টেম্বর জম্মু ও কাশ্মীরেরউরি’তে জঙ্গিহানায় প্রাণহানির ঘটনায় শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেন মৈত্রী লিগ-এরসদস্যরা। সুইডেনের একবাণিজ্য প্রতিনিধি দল আজ এখানে এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ঐ প্রতিনিধি দলে ছিলেন কয়েকজন সিইও, যাঁরা ভারত-সুইডেনবাণিজ্য নেতাদের গোল-টেবিল বৈঠকে যোগ দিতে বর্তমানে ভারতে রয়েছেন। প্রতিনিধি দলকেআন্তরিকভাবে স্বাগত জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল ‘স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন নয়ডায়। তালিকাভুক্ত বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলির প্রতিটি শাখা থেকে অন্তত দুটি করে ঋণ সহায়তা দেওয়ার ব্যবস্থা করা হবে এই কর্মসূচির মাধ্যমে। চালু করা হবে একটি ওয়েব পোর্টালও যার মাধ্যমে অনলাইন নথিভুক্তি এবং অন্যান্য সহায়ক পরিষেবার সুযোগ পাওয়া যাবে। এই উপলক্ষে ৫,১০০টি ই-রিক্সার যাত্রার সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। এঁদের আগে সাধকী আলফান্সো সন্ত পর্যায়ে উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, যিনিও কেরলের বাসিন্দা। সন্ত শাভারা ও সন্ত ইউফ্রেশিয়ার জীবন ও কর্ম কেবলমাত্র খ্রীষ্টান সম্প্রদায়ের কাছেই নয়, বরং সামগ্রিকভাবে মানবজাতির কাছেও অনুপ্রেরণামূলক। নিঃস্বার্থ সেবার মাধ্যমে মানবজাতির কল্যাণের জন্য ঈশ্বরের কাছে নিজেদের উৎসর্গের দিক থেকে এঁরা উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। সন্ত শাভারা ছিলেন প্রার্থনায় বিশ্বাসী এবং একজন সমাজ সংস্কারক। শিক্ষার সুবিধা ছিল সীমিত এমন একটি যুগে তিনি প্রতিটি গীর্জায় একটি করে বিদ্যালয়ের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছিলেন। এইভাবে তিনি সমাজের সব শ্রেণীর মানুষের জন্য শিক্ষার দ্বার খুলে দিয়েছিলেন। কেরলের বাইরে অতি অল্প সংখ্যক মানুষই এ বিষয়ে অবগত আছেন যে, সন্ত শাভারা একটি সংস্কৃত শিক্ষার বিদ্যালয় ও একটি মুদ্রণ প্রেস চালু করেছিলেন। মহিলাদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রেও তাঁর অবদান অনস্বীকার্য। সন্ত ইউফ্রেশিয়া ছিলেন একজন সুফি ভাবধারার ব্যক্তিত্ব যিনি ঈশ্বরের কাছে নিজের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন। মানবজাতির সেবার মাধ্যমে এঁরা দু`জনেই নিজেদের জীবন ঈশ্বরের কাছে সমর্পণ করেছিলেন। হাজার হাজার বছর আগে ভারতীয় সাধু ও গ্রীসের পরম বিজ্ঞ ব্যক্তিরা নিজেদের মধ্যে মেধা ও আধ্যাত্মিকতা বিনিময় করতেন। নতুন ধ্যান-ধারণার প্রতি ভারতের উদারতা ঋগ্বেদে স্পষ্ট প্রতীয়মান। এই দার্শনিকতা স্মরণাতীতকাল আমাদের মেধাবী ধ্যান-ধারণাকে সঠিক দিশায় পরিচালিত করেছে। ভারতমাতা বহু ধার্মিক ও আধ্যাত্মিক ধারার জন্ম দিয়েছে। ধার্মিক ও আধ্যাত্মিকতার এই ধারা ভারতের গণ্ডি ছাড়িয়ে কখনও কখনও অন্যত্রও পৌঁছে গেছে। স্বাগত, শ্রদ্ধা ও সকল সত্যকে সম্মান জানানোর পরম্পরা ভারতের মতোই প্রাচীন। স্বামী বিবেকানন্দ যেমন বলেছিলেন, “আমরা কেবলমাত্র বিশ্ব সহনশীলতাতেই বিশ্বাস করি না, বরং আমরা সকল ধর্মকেই প্রকৃত হিসেবে স্বীকার করি।” স্বাধীনতার এই স্বর্গরাজ্য গড়ে তুলতে ও তার রক্ষা করতে আমরা দায়বদ্ধ। ধর্মের দিক থেকে সমগ্র বিশ্বেই ক্রমবর্ধমান বিভেদ ও প্রতিকূলতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এটি বিশ্বব্যাপী উদ্বেগের কারণ হয়ে উঠেছে। এই প্রেক্ষিতে সমস্ত সত্যের প্রতি পারস্পরিক শ্রদ্ধা প্রদর্শনের প্রাচীন ভারতীয় রীতিনীতি বিশ্ব আলোচনার অন্যতম বিষয় হয়ে উঠছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ তার ঐতিহাসিক মানবাধিকারের ঘোষণাপত্রে বিশ্বাসের প্রতি স্বাধীনতার বিষয়টিকে ব্যাখা করে কিভাবে এর স্বার্থ সুরক্ষিত রাখা যায় তা বলেছে। আমরা স্বাধীনতার বিষয়টিকে একজন নাগরিকের ব্যক্তিগত পছন্দ হিসেবে গণ্য করি। বিশ্বাসের প্রতি পূর্ণ স্বাধীনতার বিষয়টিকে আমার সরকার সুনিশ্চিত করবে এবং প্রত্যেকের নিজস্ব ধর্ম গ্রহণ ও তা মেনে চলার প্রকৃত অধিকার রয়েছে। আমার সরকার সংখ্যাগুরু বা সংখ্যালঘু কোনও ধার্মিক গোষ্ঠীকেই অন্যের বিরুদ্ধে ঘৃণার মনোভাব প্রদর্শনকে বরদাস্ত করবে না। আমার সরকার সকল ধর্মকেই সমান শ্রদ্ধা দিয়ে থাকে। এই স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করতে আমি একটি ব্যাপক অভিযানের সূচনা করেছি। সহজ কথায় এর মানে হল প্রত্যেকের জন্য খাবার, প্রতিটি শিশু বিদ্যালয়ের আঙ্গিনায়, প্রত্যেকের জন্য কাজ, প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার এবং প্রতিটি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ। এগুলিই ভারতকে গর্বিত করে তুলবে। একতার মধ্য দিয়ে এগুলি আমরা অর্জন করতে পারি। একতা আমাদের শক্তিশালী করে। বিভেদ আমাদের দুর্বল করে দেয়। বিপুল এই কর্মযজ্ঞে আমাকে সহায়তা করার জন্য সকল ভারতীয়কে এবং এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকলকে আমি আন্তরিক অনুরোধ জানাই। “গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর উদ্দেশ্যে প্রণাম জানাই। দেশের ভাবমূর্তিকে কলংকিত করার লক্ষ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রনোদিত ভাবে প্রতিবাদের নামে একাংশ মানুষ যা করছে এবং তা প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়নের পদক্ষেপগুলোকে বিপথে চালিত করার উদ্দ্যেশ্যে করা হচ্ছে বলে তাঁরা মনে করেন এবং এনিয়ে তাঁরা উদ্বেগ প্রকাশ করেন| আজ সেনাবাহিনী দিবসে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অদম্য পরাক্রম, আত্মনিবেদন এবং সংকল্প-কে সম্মান জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষ্যে জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রত্যেককে আমার বুদ্ধ পূর্ণিমার শুভেচ্ছা। গৌতম বুদ্ধ-এর মহান শিক্ষা সমগ্র বিশ্বের লক্ষ লক্ষ মানুষকে প্রভাবিত করেছে। গৌতম বুদ্ধ জ্ঞান, শান্তি ও করুণার এক মূর্ত প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার (৩০ সেপ্টেম্বর) গুজরাটের রাজকোটে মহাত্মা গান্ধী সংগ্রহালয় উদ্বোধন করছেন। গান্ধী-সংস্কৃতি, তাঁর মূল্যবোধ এবং আদর্শ সম্পর্কে সচেতনতা প্রচারে সংগ্রহালয়টি কাজ করবে। শ্রী মোদী ৬২৪টি বাড়ির এক সরকারি আবাসন প্রকল্পের উদ্বোধন উপলক্ষ্যে ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। তিনি ২৪০টি উপকৃত পরিবারের ‘ই-গৃহপ্রবেশ’ অনুষ্ঠানও প্রত্যক্ষ করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাত্মা গান্ধীর কাছ থেকে এখনও অনেক কিছু শেখার রয়েছে। গান্ধীর আর্শিবাদধন্য এই ভূমি বাপুর সঙ্গে অতোপ্রতভাবে জড়িত বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। পরিবেশের ব্যাপারে বাপুর উদ্বেগের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গান্ধীজির কাজকর্মে উৎসাহিত হয়ে আমাদের আরও পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন এবং সবুজায়িত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করতে হবে। একজোট হয়ে আমরা বাপুর এই স্বপ্নপূরণ করতে পারি বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। ভারতের প্রথম উপ-প্রধানমন্ত্রী সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকী আগামীকাল। এই দিনটি পালিত হবে ‘রাষ্ট্রীয় একতা দিবস’ হিসেবে। আগামীকাল সকাল ৭-৩০ মিনিটে রাজধানীর পার্লামেন্ট স্ট্রিটে সর্দার প্যাটেলের মূর্তিতে মাল্যদান করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এরপর তিনি ‘ঐক্যের জন্য দৌড়’-এ অংশগ্রহণের জন্য সমবেত জনতার উদ্দেশ্যে রাজপথে এক ভাষণও দেবেন। সমাবেশে তিনি ঐক্যের শপথও গ্রহণ করাবেন। ‘রাষ্ট্রীয় একতা দিবস’-এর প্রাক্কালে আজ রাজধানীর বিভিন্ন কেন্দ্রীয় সরকারি কার্যালয়ে জাতীয় ঐক্যের শপথবাক্য পাঠ করানো হয়। দেশের বিভিন্ন রাজ্য এমনকি বিদেশেও ‘রাষ্ট্রীয় একতা দিবস’ পালিত হচ্ছে। আঙ্কারায় বোমা বিস্ফোরণে বহু জীবনহানির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি দুঃখ প্রকাশ করেছেন | 2. ১৭ নভেম্বর, ২০১৮-এ মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর এই প্রথম সলিহ বিদেশ সফরে এলেন। 3. রাষ্ট্রপতি সলিহ রাষ্ট্রপতির বিশেষ অতিথি হিসাবে রাষ্ট্রপতি ভবনেই থাকছেন। এ থেকে ভারত ও মালদ্বীপের ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ও দুই সরকারের মধ্যে পরস্পরের জন্য যথাযথ সম্মান প্রকাশিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মহম্মদ সলিহ ও তাঁর সঙ্গে আসা প্রতিনিধিদলের সম্মানে এক মধ্যাহ্ন ভোজের আয়োজন করেন। 6. দু’পক্ষের মধ্যে সফরকালে নিম্নলিখিত চুক্তি/সমঝোতাপত্র/যৌথ ঘোষণাপত্র স্বাক্ষরিত হয়। Ø ভিসা ব্যবস্থার সরলীকরণ চুক্তি Ø সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য সমঝোতাপত্র Ø জৈব বাণিজ্যের বাস্তুতন্ত্র উন্নয়নের লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার জন্য সমঝোতাপত্র Ø তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য যৌথ ঘোষণা উভয় নেতা নিম্নলিখিত বিষয়গুলিতে যোগাযোগ বৃদ্ধির জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামো তৈরির বিষয়ে একযোগে কাজ করতে সম্মত হয়েছেন – Ø স্বাস্থ্য পরিষেবা, বিশেষ করে ক্যান্সারের চিকিৎসায় সহযোগিতার বিষয়। Ø ফৌজদারি বিষয়ে পারস্পরিক আইনি সহায়তা। Ø মানবসম্পদ উন্নয়ন। 7. প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আন্তরিকভাবে রাষ্ট্রপতি সলিহ-র শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে তাঁর সাম্প্রতিক মালদ্বীপ সফরের কথা স্মরণ করেন। তিনি মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্ব দেন। 9. প্রধানমন্ত্রী মোদী গণতন্ত্রের প্রতিষ্ঠায় তাদের নতুন যাত্রাপথের জন্য মালদ্বীপবাসীকে অভিনন্দন জানান। তিনি মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতির সার্বিক এবং জন-কেন্দ্রীক শাসন ব্যবস্থার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর সরকারের ‘প্রতিবেশী প্রথমে’ নীতির কথা উল্লেখ করে বলেন, মালদ্বীপের সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে এবং সেদেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় ভারত সবরকম সাহায্য করবে। 10.এই উপলক্ষে, প্রধানমন্ত্রী সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ১.৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সাহায্য দেবার কথা ঘোষণা করেন। 11. রাষ্ট্রপতি সলিহা তাঁর সরকারের ‘ভারত প্রথমে’ নীতির কথা উল্লেখ করেন এবং ভারতের সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য মালদ্বীপের প্রতিশ্রুতির কথা পুনরায় উল্লেখ করেন। 14.মানুষে – মানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধি এবং পর্যটনের গুরুত্বের কথা স্বীকার করে উভয় নেতা ভিসা সরলীকরণ ব্যবস্থা নিয়ে যে আজ চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টিকে স্বাগত জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন এই চুক্তির ফলে মানুষে – মানুষে সংযোগ বৃদ্ধি পাবে। 15.রাষ্ট্রপতি সলিহ এই চুক্তিগুলি স্বাক্ষরে তাঁর সন্তোষ ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, এর ফলে, বহু মালদ্বীপবাসী তাঁদের শিশুদের ভারতের স্কুলে পাঠাতে পারবেন। দুই নেতা ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে অতিরিক্ত প্রহরা, তথ্য আদান-প্রদান ও আকাশপথে নজরদারির মধ্য দিয়ে সমুদ্র নিরাপত্তা বৃদ্ধির বিষয়ে গুরুত্ব দেন। 17.দুই নেতা, সন্ত্রাস মোকাবিলায় তাঁদের প্রতিশ্রুতিবদ্ধতার কথা পুনরায় ব্যক্ত করেন। 18.উভয় নেতা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কিত চুক্তির বিষয়গুলি পর্যালোচনা করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে মালদ্বীপে ভারতীয় কোম্পানিগুলির বিনিয়োগের সুযোগ বৃদ্ধির বিষয়টিকে প্রধানমন্ত্রী মোদী স্বাগত জানান। মালদ্বীপ সরকারের লক্ষ্য স্বচ্ছ বলেও তিনি উল্লেখ করেন। মৎস্য, পর্যটন, যোগাযোগ, স্বাস্থ্য, শিক্ষা, প্রযুক্তি, তথ্য, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সহ নানা ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও মজবুত করার বিষয়ে উভয় নেতা সম্মত হন। 19.উভয় নেতা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারেও সম্মত হন। 20.মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের দাবিকে সমর্থন জানান। ২০২০ – ২১ সালের জন্য অস্থায়ী আসনে ভারতের প্রার্থীপদকে তিনি সমর্থন জানান। 21.প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কমনওয়েলথ গোষ্ঠীতে মালদ্বীপের পুনরায় যোগদানের বিষয়টিকে স্বাগত জানান। ভারত মহাসাগরীয় রিম অ্যাসোসিয়েশনের নবীনতম সদস্য হিসাবে মালদ্বীপ’কে স্বাগত জানান তিনি। 23.আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক সিদ্ধান্ত গ্রহণের বিষয়ে উন্নয়নশীল দেশগুলির অংশীদারিত্ব বৃদ্ধিতে বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠন ও মজবুতিকরণের ওপর জোর দেন দুই নেতা। 24.মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি, ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে তাঁর উষ্ণ আন্তরিক আপ্যায়নের জন্য ধন্যবাদ জানান। 25.মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি, ভারতের রাষ্ট্রপতিকে সরকারি সফরে মালদ্বীপ যাওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানান। বিদেশে ভারতীয় মুসলিমদের এক ইতিবাচক ভাবমূর্তি রয়েছে – বললেনপ্রধানমন্ত্রী মুসলিম উলেমা,বুদ্ধিজীবী, শিক্ষাবিদ এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নিয়ে গঠিত এক প্রতিনিধিদলআজ এখানে এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। সংখ্যালঘু সম্প্রদায় সহ সমাজের সর্বস্তরের সাধারণ মানুষের অন্তর্ভুক্তি এবং শিক্ষাও আর্থ-সামাজিক ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের জন্যপ্রধানমন্ত্রীকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানান প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। স্বচ্ছভারত অভিযানকে সফল করে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর উদ্যম ও প্রচেষ্টারও ভূয়সীপ্রশংসা করেন তাঁরা। কারণ, ভারতেরঐতিহ্য, সংস্কৃতি ও সামাজিকতার কাঠামোতে সন্ত্রাস বা তাতে মদত দেওয়ার কোন স্থাননেই। প্রসঙ্গত শিক্ষা ও দক্ষতা বিকাশের ওপরও বিশেষ জোর দেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী।তিনি বলেন, উপযুক্ত কর্মসংস্থান এবং দারিদ্র্য মোচনের ক্ষেত্রে শিক্ষা ও দক্ষতা হলদুটি গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার। আজকের প্রতিনিধিদলেছিলেন ইমাম উমের আহমেদ ইলিয়াসি (ভারতের প্রধান ইমাম), লেঃ জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত)জামিরুদ্দিন শাহ (আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য), এম ওয়াই ইকবাল (সুপ্রিমকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতি), তালাত আহমেদ (জামিয়া মিলিয়া ইসলামিয়া বিশ্ববিদ্যালয়েরউপাচার্য) এবং শাহিদ সিদ্দিকি (উর্দু সাংবাদিক)। এই ক্যাডার সার্ভিসে কাঠামোগত নিম্নলিখিত পরিবর্তনগুলোও অনুমোদিত হয়েছে : ২) জেএজি পর্যায়ে চারটি পদ বৃদ্ধি; ৪) জেটিএস পর্যায়ে ১২ টি পদ হ্রাস; গ্রুপ-এ ইন্জিনিয়ারিং সার্ভিসের অনুরূপ এসটিএস পর্যায়ে এসডিপি-র ১৫ শতাংশ এনএফএসজি প্রবর্তনেও মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে | বলা বাহুল্য, দেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনের মূল উৎস হল কয়লা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৩১ আগস্ট (শুক্রবার)কাঠমান্ডুতে নেপালের প্রধানমন্ত্রী শ্রী কে পি সিং আলির সঙ্গে যৌথভাবে পশুপতিনাথ ধর্মশালার উদ্বোধন করেন। পশুপতিনাথ ধর্মশালা উদ্বোধন করে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে পশুপতিনাথ, মুক্তিনাথ ও জনকধামের মন্দিরগুলি নেপালের বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য তুলে ধরার পাশাপাশি ভারতের সঙ্গে বন্ধনকেও সুদৃঢ় করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হিন্দু ও বৌদ্ধদের ঐতিহ্য কথা বলেন, যা কাঠমান্ডু শহরে প্রতিধ্বনিত হয়। তিনি জানান কিভাবে বৌদ্ধধর্ম ভারত ও নেপালের মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ সংযোগের মাধ্যম হয়েছে। দুটি দেশই নিজের মহিমান্বিত ঐতিহ্যের বিষয়ে গর্বিত, বলেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী উন্নয়নের প্রয়োজনীয়তা, বিশেষ করে সমাজের দুর্বল ও প্রান্তিক শ্রেণীর বিকাশের প্রয়োজনের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, ভারত অর্থনৈতিক বিকাশে নতুন উচ্চতা অর্জন করেছে এবং ‘সবার সঙ্গে, সবার বিকাশ’ দর্শনে নেপালের জনসাধারণও রয়েছে। শ্রী মোদী জানান, নেপালের রাজনৈতিক স্হিতিশীলতা দেখে ভারত আনন্দিত বোধ করছে। সর্বোপরি, চো রামস্বামী ছিলেন বিশেষবন্ধুবৎসল । চোরামস্বামী ছিলেন গভীর অন্তর্দৃষ্টি সম্পন্ন এবং অসামান্য ব্যুৎপত্তির অধিকারী । তাঁর প্রয়াণে আমি শোকাহত। “ ম্যাঞ্চেস্টারে হামলার ঘটনায় আমি ব্যথাহত। আমরা এর তীব্র নিন্দা করি। সোমবারনয়াদিল্লিতে ‘প্রধানমন্ত্রী সহজ বিজলীহর ঘর যোজনা’, অর্থাৎ, ‘সৌভাগ্য’ কর্মসূচিরআনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই কর্মসূচির মূললক্ষ্য হল দেশের প্রত্যেকটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগের সুযোগ পৌঁছে দেওয়া। পণ্ডিতদীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে ‘দীনদয়াল উর্জা ভবন’ নামে ওএনজিসি-র একটিনতুন ভবনও উৎসর্গ করেন জাতির উদ্দেশে। গ্যাসক্ষেত্রের একটি বুস্টার কম্প্রেসারও এদিন জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন তিনি। অন্যদিকে, বৃদ্ধি পেয়েছে বিদ্যুৎ সংবহন ক্ষমতা। ‘উদয়’কর্মসূচির মাধ্যমে বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাগুলি যেভাবে তাদের লোকসানের মাত্রা কমিয়েআনার কাজে সাফল্য অর্জন করেছে, তা সহযোগিতা তথা প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়তারএক বিশেষ দৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদীবলেন, ‘নতুন ভারত’ গড়ে তুলতে প্রয়োজন জ্বালানির এমন এক কাঠামোগত ব্যবস্থা যা সমতা,দক্ষতা এবং নিরন্তর বিকাশের নীতি অনুসরণ করে গড়ে উঠবে। জ্বালানি ক্ষেত্রকে আরওচাঙ্গা ও শক্তিশালী করে তুলতে কেন্দ্রীয় সরকারের কর্মসংস্কৃতির ক্ষেত্রেও যে আমূলপরিবর্তন ঘটেছে, সেই প্রসঙ্গটিও এদিন স্থান পায় তাঁর বক্তব্যে। 1. ভারত-যুক্তরাজ্য শীর্ষ প্রযুক্তি বৈঠক ২০১৬’তে ভাষণ দেওয়ার সুযোগ পেয়ে আমিআনন্দিত। 4. আজ এখানে আপনার উপস্থিতি দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক গড়ে তোলার অঙ্গীকারের কথাইপুনর্ব্যক্ত করছে। 5. বর্তমান বিশ্ব প্রযুক্তি, অগ্রগতি ও রূপান্তর প্রক্রিয়ার এক সন্ধিস্থলেদাঁড়িয়ে। ভারত ও যুক্তরাজ্য দুটি দেশই ঐতিহাসিক দিক থেকে পরস্পরের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত।তাই, ২১ শতকের জ্ঞান নির্ভর অর্থনীতির সংজ্ঞা নির্ধারণে দুটি দেশেরই যুক্তভাবে কাজকরে যাওয়া একান্তজরুরি। 6. বর্তমান বিশ্ব পরিস্থিতিতে বেশ কিছু অর্থনৈতিক চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন আমাদেরএই দুটি দেশ। যার প্রত্যক্ষ প্রতিফলন ঘটেছে আমাদের শিল্প ও বাণিজ্য প্রচেষ্টায়।বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে আমাদের পরস্পরের ক্ষমতা ও প্রযুক্তিগত দক্ষতা যে নতুন নতুনসুযোগ-সুবিধার দ্বার উন্মুক্ত করে দিতে পারে, সে বিষয়ে আমি দৃঢ় বিশ্বাসী। 7. ভারত বর্তমানে দ্রুততম গতিতে বেড়ে ওঠা এক বিরট অর্থনীতি, যেখানে রয়েছে উদারবিনিয়োগের সুযোগ। 8. একইভাবে, সাম্প্রতিক অতীতে যুক্তরাজ্য এক শ্রমসাধ্য অগ্রগতির মধ্য দিয়েএগিয়ে গেছে। শিক্ষা, অনুসন্ধান এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে তা হয়ে উঠেছেএক উৎকর্ষ কেন্দ্র। দুটি দেশই পরস্পরেরঅর্থনীতিতে এক বিরাট সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ এনে দিয়েছে। 10. বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বর্তমানভারত-যুক্তরাজ্য সহযোগিতার মূলে রয়েছে ‘উন্নতমান’ এবং ‘বলিষ্ঠ প্রভাব’ যুক্তগবেষণা প্রচেষ্টা। এছাড়াও,মিলিতভাবে ১৫ মিলিয়ন পাউন্ড বিনিয়োগের মাধ্যমে রোগ-জীবাণুর প্রতিষেধক প্রতিরোধীক্ষমতার বিরুদ্ধে এক নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলার কাজও শুরু হচ্ছে। 13. রোগ প্রতিরোধী স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতেভারতের চিরাচরিত জ্ঞানের মৌলিক বিষয়গুলির সঙ্গে বর্তমান বৈজ্ঞানিক অনুসন্ধানপ্রচেষ্টার সমন্বয়সাধনের ক্ষেত্রেও ভারত ও যুক্তরাজ্য পরস্পরের অংশীদার হয়ে উঠতেপারে বলে আমি মনে করি। এর মাধ্যমে এ যুগের জীবনযাত্রার অভ্যাসের সঙ্গে সম্পর্কিতবিভিন্ন রোগব্যধি থেকে মুক্তির সমাধানসূত্র উদ্ভাবন করা সম্ভব। 14. আমাদের সর্বাপেক্ষা উৎসাহব্যঞ্জক যে সমস্তকর্মসূচি রয়েছে, তার মধ্যে অন্যতম হল ভারত-যুক্তরাজ্য শিল্প গবেষণা প্রচেষ্টারক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব। সিআইআই-এর বিশ্ব উদ্ভাবন ও প্রযুক্তি সমঝোতা অর্থাৎজিআইটি-এর মঞ্চ এবং আমাদের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর ইনোভেট-ইউকে’র সঙ্গেমিলিতভাবে শিল্প পরিচালিত গবেষণা ও উন্নয়ন প্রকল্পগুলিকে সফল করে তুলতে পারে সুলভস্বাস্থ্য ব্যবস্থা, দূষণমুক্ত প্রযুক্তি, উৎপাদন ও আইসিটি ব্যবস্থার কল্যাণে। 15. বিজ্ঞানপ্রসূত জ্ঞানকে প্রযুক্তিচালিতশিল্পোদ্যোগে রূপান্তরিত করার ক্ষেত্রে এই ক্ষেত্রগুলি ভারত ও যুক্তরাজ্যেরবাণিজ্য ক্ষেত্রে নতুন নতুন সম্ভাবনা গড়ে তুলতে পারে। আজ এখানে উপস্থিত সমস্তঅংশগ্রহণকারীকেই আমি আহ্বান জানাই উদ্ভাবন এবং প্রযুক্তিনির্ভর শিল্পোদ্যোগপ্রচেষ্টার লক্ষ্যে এই উৎসাহমূলক দ্বিপাক্ষিক কর্মসূচিগুলিতে অংশগ্রহণের মাধ্যমেমূল্য সংযোজনের জন্য। 16. আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, বিজ্ঞান, প্রযুক্তিও উদ্ভাবন হল অগ্রগতির ক্ষেত্রে এক বিশেষ শক্তি, যা আমাদের দু’দেশের সম্পর্কে একগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আমাদের মিলিত প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও বৈজ্ঞানিকজ্ঞানানুসন্ধানকে ভিত্তি করে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে শক্তিশালী করেতোলাই এই শীর্ষ প্রযুক্তি বৈঠকের বিশেষ লক্ষ্য। 17. আমি বরাবরই বলে এসেছি যে, বিজ্ঞান হল সার্বজনীনকিন্তু প্রযুক্তিকে হতে হবে স্থানীয় চাহিদা নির্ভর। এই প্রেক্ষিতে পরস্পরের চাহিদাএবং তার ভিত্তিতে ভবিষ্যতের সম্পর্কের দিশা নির্ণয়ের সুযোগ এনে দিতে পারে এই ধরণেরশীর্ষ বৈঠকগুলি। 18. আমার সরকারের প্রধান প্রধান উন্নয়নমূলককর্মসূচি, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আমাদের আশা-আকাঙ্খা ও তার সফল রূপায়ণ এবং সর্বপরিআমাদের দু’দেশের পরস্পরের সঙ্গে বলিষ্ঠ সম্পর্কের সমন্বয়ে নতুন নতুন বিকাশ ওঅগ্রগতির পথ সুপ্রশস্ত হবে ভারতীয় ও ব্রিটিশ শিল্প সংস্থাগুলির জন্য। 21. ভারতের দ্রুত উন্নয়নশীল আর্থিক পরিষেবাক্ষেত্রেও খুব স্বাভাবিকভাবেই গড়ে উঠবে এক সহযোগিতার বাতাবরণ। 22. আর্থিক প্রযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক অর্থলগ্নিরক্ষেত্রে যুক্তরাজ্যের নেতৃত্বদানের মধ্য দিয়ে এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী বিভিন্নসংস্থা সম্ভাবনাময় সুযোগগুলিকে কাজে লাগাতে পারে। 23. আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে ‘মেক ইনইন্ডিয়া’ কর্মসূচিটি এক অন্যতম প্রধান বিষয় হয়ে উঠবে বলে আমাদের আশা। এই কর্মসূচিরআওতায় উৎপাদন ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তোলার লক্ষ্যে এক বিশেষ প্রচেষ্টা চালানোহচ্ছে। প্রতিরক্ষা উৎপাদন, মহাকাশ এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে আমাদের প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগ সংক্রান্ত উদারনীতির সুযোগ গ্রহণের মাধ্যমে লাভবান হতে পারে আমাদের অন্যতমপ্রধান অংশীদার যুক্তরাজ্য। 24. আমাদের ‘স্মার্ট নগরী’ কর্মসূচির লক্ষ্য হলদ্রুত নগরায়ন প্রচেষ্টার সঙ্গে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে যুক্ত করা। আমি একথা ঘোষণাকরতে পেরে বিশেষভাবে আনন্দিত যে ইতিমধ্যেই পুণে, অমরাবতী এবং ইন্দোরেরপ্রকল্পগুলিতে ভালোরকম উৎসাহ ও আগ্রহ আমরা লক্ষ্য করেছি যুক্তরাজ্য থেকে। 26. আমরা দুটি দেশ যুক্তভাবে নতুন নতুন উদ্ভাবনীপ্রযুক্তির সঙ্গে নতুন বাণিজ্য ব্যবস্থার প্রয়োগ ও সংযুক্তির মধ্য দিয়ে একপ্রাণচঞ্চল উৎসাহের পরিবেশ গড়ে তুলতে পারি। 27. উন্নত মানের উৎপাদন, জৈব চিকিৎসা পদ্ধতি, নকশানির্মাণ, উদ্ভাবন এবং শিল্পোদ্যোগের মতো এই শীর্ষ বৈঠকের বিভিন্ন বিষয় আমাদেরদ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার দ্বার উন্মুক্তকরে দিতে পারে। 29. ভারত-যুক্তরাজ্য শীর্ষ প্রযুক্তি বৈঠকেরআলোচ্যসূচিতে উচ্চতর শিক্ষার বিষয়টি অন্তর্ভূক্ত হওয়ায় আমি খুশি। শিক্ষা আমাদেরছাত্রছাত্রীদের জন্য অপরিহার্য এবং ভবিষ্যতের লক্ষ্যে আমাদের মিলিত প্রচেষ্টার ক্ষেত্রেতা এক নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করবে। এই কারণে শিক্ষা ও গবেষণা সংক্রান্তসুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রগুলিতে তরুণ ছাত্রছাত্রীদের অংশগ্রহণের বিষয়টিকে আমাদেরঅবশ্যই উৎসাহিত করতে হবে। 30. এক সহযোগী দেশ হিসেবে যুক্তরাজ্যকে সঙ্গে নিয়েএই ধরণের একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈঠক আয়োজনের জন্য আমি বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাইবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর এবং কনফেডারেশন অফ ইন্ডিয়ান ইন্ডাস্ট্রিকে। এই শীর্ষ প্রযুক্তিবৈঠক যে ভারত-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের পরবর্তী পর্যায়ের ভিত্তি স্থাপন করতে চলেছে, সেসম্পর্কে আমি দৃঢ় বিশ্বাসী। বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে জ্ঞানের অনুসরণ এবং প্রযুক্তিগতদক্ষতার ওপর ভিত্তি করে এই বৈঠক আমাদের একসঙ্গেএগিয়ে যাওয়ার জন্য এক নতুনযাত্রাপথের সন্ধান দেবে। 31. এই বৈঠকের সাফল্যের জন্য যাঁদের উপস্থিতি ওঅবদান একান্ত জরুরি এই বৈঠকে অংশগ্রহণকারী ভারত ও যুক্তরাজ্যের সেই সমস্ত প্রতিনিধিদের আমি ধন্যবাদ জানাই। বিভিন্ন রাজ্যে রেল পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির রূপায়ণে সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগ গড়ে তুলতে রেল মন্ত্রককে অনুমতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সম্পর্কিত একটি প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়। প্রকল্পের আকার অনুযায়ী প্রত্যেকটি যৌথ উদ্যোগের প্রারম্ভিক মূলধন হবে ১০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে রেল মন্ত্রকের মূলধনের পরিমাণ প্রতিটি রাজ্যের ক্ষেত্রেই দাঁড়াবে ৫০ কোটি টাকা। এই যৌথ উদ্যোগ প্রচেষ্টা রেলের বিভিন্ন প্রকল্পে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির অংশগ্রহণ আরও নিশ্চিত করে তুলবে। এছাড়াও, প্রকল্প রূপায়ণের কাজে জমি অধিগ্রহণের মতো বিষয়গুলিরও দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ২০১৫-র অক্টোবরে ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক ক্ষেত্রে ভারত ও মালদ্বিপের মধ্যে সাক্ষরিত ‘মউ’-এর অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার (৭ ডিসেম্বর) নতুন দিল্লিতে দৈনিক জাগরণ সংবাদপত্রের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে জাগরণ মঞ্চে ভাষণ দেন। তাজ প্যালেস হোটেলে সমবেত বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের উদ্দেশে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী অন্যান্যদের মধ্যে বিশেষ করে, রোজ সকালে যাঁরা সংবাদপত্র বন্টনের কাজ করেন সেই সমস্ত হকারদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, এই হকাররাই রোজ অসংখ্য পরিবারে সংবাদপত্র পৌঁছে দিতে সাহায্য করে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দৈনিক জাগরণ পত্রিকা সচেতনতা গড়ে তোলার পাশাপাশি, দেশের পুনর্গঠনে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। তিনি আরও বলেন, তাঁর ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা অনুযায়ী, দেশে ও সমাজে পরিবর্তন নিয়ে আসার আন্দোলনগুলিকে এই পত্রিকা সক্রিয়ভাবে সাহায্য করেছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ‘বেটি বাঁচাও বেটি পড়াও’; ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এর মত উদ্যোগগুলির কথা উল্লেখ করেন। ডিজিটাল বিপ্লবের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে গণমাধ্যমগুলি দেশকে আরও শক্তিশালী করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ন্যূনতম শাসন, সর্বাধিক প্রশাসন’ এবং ‘সকলকে সঙ্গে নিয়ে সকলের অগ্রগতি’র নীতি নতুন ভারত গঠনের ভিত্তি গড়ে তুলছে। বর্তমান যুবসমাজ অনুভব করছেন, তাঁরাও সার্বিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ার অংশীদার। তিনি প্রশ্ন করেন, স্বাধীনতার পর এতগুলি দশক পেরিয়েও কেন আমাদের দেশ এখনও পিছিয়ে রয়েছে? তিনি জানতে চান, কেন দেশের মানুষের সমস্যাগুলির সমাধান হতে পারে না? তিনি আরও বলেন, তাঁর এই চার বছরের কার্যকালে গ্রামীণ পরিবারগুলিতে শৌচালয়ের পরিধি ৩৮ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯৫ শতাংশে পৌঁছেছে। গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ৫৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯০ শতাংশে পৌঁছেছে। পারিবারিক রান্নার গ্যাসের সংযোগ ৫৫ শতাংশ থেকে বেড়ে ৯০ শতাংশ হয়েছে। ৯৫ শতাংশ গ্রামীণ পরিবারের কাছে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছেছে যা চার বছর আগে ছিল মাত্র ৭০ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যখন অন্য সবকিছু একই থাকছে, তাহলে এই পরিবর্তন কিভাবে এল? তিনি আরও বলেন, যখন দরিদ্র ও বঞ্চিত মানুষ মৌলিক সুযোগ-সুবিধা পান, তখন তাঁরা নিজেরাই দারিদ্র্য থেকে মুক্তির চেষ্টা করেন। বিগত চার বছরে এই পরিবর্তনই প্রত্যক্ষ করা যাচ্ছে এবং পরিসংখ্যান এটাই প্রমাণ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে সরকার আগ্রহী। প্রযুক্তিকে কাজে লাগানোর ভারতের পন্থা-পদ্ধতি উন্নয়নশীল দেশগুলির কাছে আদর্শস্বরূপ হয়ে উঠছে। প্রযুক্তির সঙ্গে মানুষের সংবেদনশীলতার বোঝা-পড়ার দরুণ সহজে জীবনযাপনের মান বাড়ছে। তিনি জানান, জলপথ এবং বিমান ভ্রমণের ক্ষেত্রেও প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে। কম সময়ে রান্নার গ্যাস সিলিন্ডার ভর্তি, আয়কর ফেরতের ক্ষেত্রে কম সময়, পাসপোর্ট তৈরিতে কম সময় প্রভৃতির কথা তিনি উল্লেখ করেন। তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা, সৌভাগ্য যোজনা প্রভৃতির সুযোগ-সুবিধা যাঁদের প্রয়োজন তাঁদের কাছে সহজেই পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কর্মসূচির কথাও তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই ধরণের কর্মসূচির সুফলভোগীদের মধ্যে রয়েছে শ্রমিক শ্রেণী, কৃষক সমাজ প্রভৃতি। গরিব মানুষের ক্ষমতায়নের এ ধরণের উদ্যোগকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। ভারতের অগ্রগতিতে সমগ্র বিশ্বের দৃষ্টি নিবদ্ধ রয়েছে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল প্রয়াগরাজে কুম্ভে সফর করবেন। প্রধানমন্ত্রী এরপর সমবেত জনতার উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। ত্রিবেণী সঙ্গমে প্রধানমন্ত্রী স্নান-ও করবেন। প্রয়াগরাজে তিনি সাফাইকর্মীদের সঙ্গে ব্যক্তিগতভাবে আলাপ-আলোচনা করবেন। এবছর প্রয়াগরাজের কুম্ভে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে পরিচ্ছ্নতা এবং স্বচ্ছ ভারত উদ্যোগগুলিতে। পর্যটন ক্ষেত্রে ভারত ও কাতার পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতার প্রসার ঘটাবে। বিশ্ব গ্রাহক অধিকার দিবসেপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সংশ্লিষ্ট সকলের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীবলেছেন, ‘ বিশ্ব গ্রাহক অধিকার দিবসে সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। গ্রাহকরা দেশের অর্থনীতিতেএকটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন। ভি.এস.নইপল-এর প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “স্যার ভি.এস.নইপল ইতিহাস, সংস্কৃতি, উপনিবেশবাদ, রাজনীতি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষ অবদানের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর প্রয়াণ বিশ্ব সাহিত্যের এক বড় ক্ষতি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাইজিং ইন্ডিয়া শীর্ষ বৈঠকে ভাষণ দেন।নেটওয়ার্ক ১৮ সংস্থা এর আয়োজন করেছিল। তিনি বলেন, যখন আমরা উত্থানের কথা বলি, একটিজাতির ক্ষেত্রে, তার এক ব্যাপকমাত্রা থাকে। তিনি বলেন, শুধুমাত্র অর্থনীতির উত্থানই নয়, তিনি মনে করেন, উত্থিতভারত শব্দটির মধ্যে ভারতের মানুষের আত্মমর্যাদা উত্থানের ধারণাটি নিহিত আছে। বর্তমানে নাগরিকরানেতৃত্ব দেন এবং সরকার তাঁদের অনুসরণ করে চলে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে স্বচ্ছ ভারত অভিযান একগণআন্দোলনে পরিণত হয়েছে। দেশের নাগরিকরা দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়েডিজিটাল লেনদেনকে এক অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করছেন। দেশের নাগরিকরা সরকারকে বড়সিদ্ধান্ত নিতে ও রূপায়ণ করতে অনুপ্রাণিত করছেন। তিনি বলেন, মানুষের মনের জোরেরফলেই ভারতের এই রূপান্তরমুখী অগ্রগতি সম্ভব হচ্ছে। শ্রী মোদী বলেন, জাতীয় পর্যায়েসরকারের দৃষ্টিভঙ্গী হচ্ছে অসাম্যের অনুভূতি হ্রাস করা। ভিডিও’র সহায়তায় তিনিদেখান, কিভাবে উজ্জ্বলা যোজনা যে কেবলমাত্র রান্নাঘরে রূপান্তর এনেছে তাই নয়,সমগ্র পরিবারেই রূপান্তর ঘটিয়ে ফেলেছে। এই কাজ আমাদের সামাজিক গঠনের মধ্যে নিহিতএক বড় অসমতার সমস্যাকে মোকাবিলা করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র ভারতের সঙ্গে মানসিকযোগাযোগের বিষয়টি এবং পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জনসংখ্যার মধ্যে বয়সজনিত সুবিধারবিষয়টি মাথায় রাখতে হবে। তিনি বলেন, পূর্ব ভারতে ১২টি নতুন বিমানবন্দর নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে বিদ্যুৎ সংযোগবিহীন ১৮ হাজার গ্রামের মধ্যে ১৩হাজারই রয়েছে এবং ৫ হাজার রয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলে। খুব শীর্ঘ্রই এইসব গ্রামগুলিতেবিদ্যুৎ সংযোগের কাজ সম্পন্ন হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌভাগ্য যোজনার মাধ্যমেপ্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হবে। বিচ্ছিন্নতা থেকে অখন্ডতার দিকে পূর্বভারতের এই অগ্রযাত্রা উত্থিত ভারতকে শক্তি যোগাবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। হৃদরোগ চিকিৎসার স্টেন্ট এবং হাঁটু প্রতিস্থাপনের মেডিকেলসরঞ্জামেরও দাম নিয়ন্ত্রণ করা হয়েছে বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পে প্রায় ১০ কোটি পরিবারকেস্বাস্থ্য বিমার সুবিধা দেওয়া হবে। তিনি বলেন, চিকিৎসক ঘাটতির সমস্যা মেটাতেমেডিকেল কলেজগুলিতে আসন সংখ্যা বহুলাংশে বাড়ানো হয়েছে। তিনি আন্তর্জাতিক নারীদিবসে জাতীয় পুষ্টি মিশনের সূচনার কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার প্রত্যেকটি ক্ষেত্রের জন্য পৃথক পৃথকমডেলে উন্নয়নের কাজ করে চলেছে। শক্তি ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী স্থবিরতা ভেঙ্গে সমস্যার সমাধানের ওপরগুরুত্ব দেন। তিনি বলেন শক্তি মন্ত্রক, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক ও কয়লামন্ত্রক এক অখন্ড একক হিসাবে কাজ করে চলেছে। ভারত বিদ্যুৎ ঘাটতি থেকে অতিরিক্তবিদ্যুতের দিকে এগিয়ে চলেছে এবং নেটওয়ার্কের ব্যর্থতা থেকে নেট এক্সপোর্টার হিসাবেপরিচিতি পাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, মানুষ আজ বিশ্বাস করেন যে, ভারত তার দুর্বলতাগুলিকেপেছনে ফেলে এগিয়ে যেতে পারবে। ভারত যেকেবলমাত্র নিজের উন্নয়নের ক্ষেত্রেই দিশা দেখাচ্ছে তাই নয়, সমগ্র বিশ্বের উন্নয়নেরক্ষেত্রেও এই কাজ করে চলেছে। ভারত আজ সৌরবিদ্যুতের বিপ্লবের নেতৃত্ব দিচ্ছে।যেমনটা দেখা যাচ্ছে, আন্তর্জাতিক সৌর জোটের সম্মেলনের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, এইআন্তর্জাতিক মঞ্চগুলিতে যেমন জি-২০ বা রাষ্ট্রসংঘে ভারত সন্ত্রাসবাদ, কালো টাকাএবং দুর্নীতির মতো এমনসব গুরুত্বপূর্ণ বিষয় উত্থাপন করেছে, যা সমগ্র বিশ্বকেক্ষতিগ্রস্ত করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে গত তিন-চার বছরে ভারত বিশ্বঅর্থনৈতিক বৃদ্ধিকে শক্তি যুগিয়েছে। অর্থনীটি ব্যাপকতর সবকটি ক্ষেত্রে ভারত উল্লেখযোগ্যঅগ্রগতি করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী জানান যে, রেটিং সংস্থাগুলি ভারতে রেটিং সংশোধনকরে ঊর্ধ্বমুখী করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, সরকার দরিদ্র, নিম্ন মধ্যবিত্ত ও মধ্যবিত্তসম্পদায়ের মানুষের আশা-আকাঙ্খার কথা মাথায় রেখে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক সার্বিকদৃষ্টিভঙ্গীতে কাজ করে চলেছে। আপনাদেরসকলের সঙ্গে আজ এখানে মিলিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। এ ধরনের আলাপ-আলোচনারউদ্দেশ্যে আমাদের সকলকে এখানে একত্রিত হওয়ার সুযোগদানের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাইপ্রেসিডেন্ট জি জিনপিং-কে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের২০৩০-এর লক্ষ্যে কর্মসূচি গ্রহণ এবং এর আওতায় ১৭টি নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাস্থির করার পর অতিক্রান্ত হয়েছে দুটি বছর।আমরা লক্ষ্য করেছি যে এই সময়কালে নির্দিষ্টলক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্য সমবেত উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা আরও শক্তিশালী হয়ে উঠেছে। সদ্যসমাপ্ত জুলাই মাসে নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যগুলি সম্পর্কে এক জাতীয় পর্যালোচনার কাজভারত সম্পূর্ণ করেছে। আমাদের উন্নয়ন কর্মসূচির মূল মন্ত্রই হল – “সব কা সাথ, সব কাবিকাশ”, অর্থাৎ, সমবেত প্রচেষ্টা, অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশ। প্রত্যেকটি নিরন্তরউন্নয়নের লক্ষ্যকে আমাদের নিজস্ব উন্নয়ন কর্মসূচি ও প্রকল্প অনুযায়ী আমরা স্থিরকরেছি রাজ্য তথা যুক্তরাষ্ট্রীয় পর্যায়ে। নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাগুলিসম্পর্কে সংসদীয় আলোচনা ও বিতর্কেরও আয়োজন করা হয় আমাদের দেশের সংসদে। সুনির্দিষ্টএক মেয়াদের মধ্যে এই লক্ষ্য পূরণের তাগিদেরূপায়িত হচ্ছে আমাদের এই কর্মসূচিগুলি।একটিমাত্র দৃষ্টান্তআমি এই প্রসঙ্গে তুলে ধরতে চাই। দেশে আমরাযেভাবে এই প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি, সেই একই ধরনের প্রচেষ্টা এক বলিষ্ঠআন্তর্জাতিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের মাধ্যমে গড়ে উঠুক এটাই আমাদের লক্ষ্য। এজন্যআমাদের পক্ষ থেকে যা কিছু করণীয় তা করার জন্যও আমরা এখন প্রস্তুত। আফ্রিকার ‘সোলার মামাজ’ প্রশিক্ষণ লাভকরে ভারতেই যা এখন আফ্রিকা মহাদেশের হাজার হাজার বাসস্থানে আলোর সুযোগ পৌঁছেদিচ্ছে। আমাদেরলক্ষ্য হল, আমাদের সহযোগী দেশগুলির চাহিদা ও অগ্রাধিকারগুলিকে ভিত্তি করে সহযোগিতাপ্রসারের এক বিশেষ আদর্শকে বাস্তবে রূপ দেওয়া। আমাদের কার্যসূচিরএই বিশেষ বিশেষ দিকগুলি অনুসরণ করে এবং সেইমতো আমাদের কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে গেলেনিজের নিজের দেশের কল্যাণসাধন ছাড়াও বিশ্ব মানবতার কল্যাণেও প্রত্যক্ষভাবে আমরাঅবদান সৃষ্টি করতে পারি। আমার সৌভাগ্যযে আরেকবার আপনাদের সঙ্গে সাক্ষাতের সুযোগ হল। ২০১৭ সালেহিজ হাইনেস ক্রাউন প্রিন্স অফ আবু ধাবি ভারত সফরে এসেছিলেন। ২০১৭ সালে আমাদেরপ্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপন সমারোহে তিনি প্রধান অতিথি ছিলেন। আজ এইউপসাগরীয় দেশগুলির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক শুধুই ক্রেতা ও বিক্রেতার নয়,অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। ভারত এজন্য গর্ববোধ করে যে ৩০ লক্ষেরও বেশিপ্রবাসী ভারতীয় এবং ভারতীয় বংশোদ্ভূতরা এই উপসাগরীয় দেশগুলির উন্নয়ন যাত্রায়অংশগ্রহণ করেছেন। ভারতীয়রাওএই দেশগুলিকে নিজের দেশ মনে করে ততটাই দায়বদ্ধতা নিয়ে পরিশ্রম করে এসব দেশেরউন্নয়নের স্বপ্নকে নিজেদের মনে অঙ্কুরিত করে নিয়েছেন। আর এক প্রকার মানব গোষ্ঠীরঅংশীদারিত্বের উত্তম উদাহরণ আমরা উপসাগরীয় দেশগুলিতে অনুভব করছি, সংযুক্ত আরবআমিরশাহীতে অনুভব করছি। অনেকেই অবাক হয়েছে যে, আমি যখন গতবার এসেছিলাম হিজ হাইনেসক্রাউন প্রিন্স তখন আবু ধাবিতে মন্দির নির্মাণের উদ্যোগ নেন। মানবতার উদার আদর্শ এবং ভাবনার গায়ে যেন কোন আঁচড় না লাগে এটাদেখার দায়িত্ব মন্দির নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত আর ভবিষ্যতে মন্দিরে যে ভক্তরা আসবেনপ্রত্যেকেরই। আপনাদের কাছে আমি ভারতের সাংস্কৃতিক পরম্পরা রক্ষার প্রত্যাশা রাখব। আজ দেশউন্নয়নের নানা নতুন উচ্চতা অতিক্রম করছে। আপনাদের পক্ষে এখানে ভারতের খবরপাওয়া কঠিন নয়। আপনারা এতটাই দেশের খবর রাখেন যে আমি দুটি কথা বললে, আপনারা দশটিকথা বলে দেবেন। ভারতের প্রতিটি প্রান্তের মানুষ এখানে রয়েছেন। আপনারা জানেন, ভারতকত দ্রুত পরিবর্তিত হচ্ছে। ১২৫ কোটি ভারতবাসী নিজেদের স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে কেমনআত্মবিশ্বাস নিয়ে এগিয়ে চলেছেন, তা আপনারা খুব ভালোভাবেই অনুভব করছেন! একটা সময়ছিল যখন দেশের সাধারণ মানুষ জিজ্ঞাসা করতেন যে, এটা হওয়া সম্ভব? কিংবাআমাদের দেশে এসব হতে পারে কী? ভারত নিজেরআন্তর্জাতিক দায়িত্ব পালনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। আজ বিশ্ব বলছে যে একবিংশ শতাব্দীএশিয়ার শতাব্দী। কিন্তু তার মানে এটা নয় যে, এমনই এমনই হয়ে যাবে। আমরা ‘শ্রেয়’ কাজগুলি করার চেষ্টা করছি, সেগুলি সমসাময়িক‘প্রিয়’ না হলেও একদিন সেটাকে প্রিয় বলে মনে হবে। কিছু সামর্থ্যবানমানুষ থাকেন, যাঁদের যে কোন পদক্ষেপ তখনই ‘প্রিয়’ বলে মনে হয়। কারও পদক্ষেপ আবারতখনই কঠিন বলে মনে হয়, সুফল পেতে সময় লাগে। যেমন বিমুদ্রাকরণ দেশের গরিব মানুষতখনই বুঝেছিলেন যে, সঠিক লক্ষ্যে শক্তিশালী পদক্ষেপ। কিন্তু যাঁদের রাতের ঘুম চলেগেছে তাঁরা দু’বছর হতে চললো – কেঁদেই চলেছেন! জিএসটি চালুহবে কি হবে না এই দ্বন্দ্ব সাত বছর ধরে চলছিল। আমরা তিন বছরের মধ্যে চালু করেদিলাম। তারপরঘুম ভাঙ্গলে বুঝতে পারি যে, নতুন বাড়িতে আছি, এখানে বাথরুম ডানদিকে। এরকম অভিজ্ঞতাপ্রত্যেকেরই আছে, তাই না? কিন্তু এই পরিবর্তন একটি শ্রেয়পদক্ষেপ। মহাত্মাগান্ধী আমাদের এই পথ দেখিয়ে গেছেন। গতকাল আমিআবু ধাবিতে অনেকক’টি চুক্তি স্বাক্ষর করেছি। এখন আমাকে অনেকদূরত্ব অতিক্রম করতে হবে। আগামী ৭০-৮০ ঘন্টার মধ্যে পাঁচটি দেশের সফর সেরে ভারতেফিরবো। জর্ডন, প্যালেস্তাইন, আবু ধাবি, এখন দুবাইয়ের কর্মসূচি সেরে আমাকে ওমানযেতে হবে। আপনাদের এই ভরসা দিচ্ছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ। এই বিশেষ দিনটিতে শান্তি, ঐক্য এবংসৌভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরও নিবিড় হয়ে উঠবে বলেই আমি আশা করি। “শ্রীরামকৃষ্ণপরমহংস জয়ন্তীতে আমি তাঁকে প্রণাম জানাই। তিনি ছিলেন সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বের একপ্রতীক। বৈষম্যমুক্ত এক সমাজের স্বপ্নদ্রষ্টাছিলেন তিনি।” প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (২২শে সেপ্টেম্বর) ওড়িশায় সফর করেন। তালচেরে তালচের সার কারখানার পুনরুজ্জীবনের কাজের সূচনা উপলক্ষে তিনি একটি ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে সার কারখানাটিতে পুনরায় কাজ শুরু হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, বহু আগেই যে স্বপ্ন পূরণ করা যেত সেটি আমরা আজ পূরণ করছি। তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্য হল ভারতকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া। সার কারখানার মতো প্রকল্পগুলি ভারতের বিকাশের কেন্দ্রবিন্দু বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করে বলেন এই কারখানায় সর্বাধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করা হবে। ঝাড়সুগুদায় প্রধানমন্ত্রী ঝাড়সুগুদা বিমানবন্দরের উদ্বোধন করেন এবং ঝাড়সুগুদা থেকে রায়পুরগামী প্রথম বিমানের যাত্রার সূচনা করেন। দুলাঙ্গা কয়লাখনিতে কয়লা উৎপাদন এবং সেখান থেকে কয়লা পরিবহণ শুরু হওয়ায় সেই মুহূর্তটিকে স্মরণে রাখতেও একটি ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝাড়সুগুদা বিমানবন্দর এবং অন্যান্য প্রকল্পের উদ্বোধন করতে পেরে তিনি খুশি। এর ফলে ওড়িশাবাসী বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। তিনি বলেন, ভারতের উড়ান ক্ষেত্রে দ্রুত রূপান্তর ঘটছে এবং ১২৫ কোটি ভারতবাসীর জন্য তা যথেষ্ট ইতিবাচক ব্যাপার। ঝাড়সুগুদা বিমানবন্দরটির যথাযথ অবস্থান ওড়িশার মানুষজনের চাহিদা পূরণ করবে বলে শ্রী মোদী মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, সার্বিক উন্নয়নের মূলে রয়েছে যোগাযোগ ব্যবস্থা। বর্তমানে প্যারিসে এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হচ্ছে এবং তা এখন প্রায় শেষ পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রসঙ্গে ফ্রান্সের প্রসিডেন্টের ভূমিকা ও দৃষ্টিভঙ্গির বিশেষ প্রশংসা করেন। ভারতের সহায়তায় সমগ্র শ্রীলঙ্কা দ্বীপে আপৎকালীন অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা সম্প্রসারণ উপলক্ষে এক লাইভ ভিডিও সংযোগ ব্যবস্থায় শনিবার ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রীলঙ্কার প্রধানমন্ত্রী মিঃ রনিল বিক্রমসিঙ্ঘেও জাফনা থেকে যোগ দিলেন এই ভিডিও বার্তালাপে। প্রধানমন্ত্রীর মূল ভাষণটি এখানে তুলে দেওয়া হল : অধ্যাপক মৈত্রী বিক্রমসিঙ্ঘে, শ্রীলঙ্কার মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়গণ, শ্রীলঙ্কায় নিযুক্ত ভারতীয় হাইকমিশনার, শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলের মাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, শ্রীলঙ্কার মাননীয় সাংসদবৃন্দ, শ্রদ্ধাভাজন ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, সরাসরি ভিডিও সংযোগ ব্যবস্থায় আপনাদের সঙ্গে জাফনায় কথা বলার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। আমি আরও খুশি এই কারণে যে শ্রীলঙ্কার সর্বত্র জাতীয় জরুরি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা সম্প্রসারণের এটি এক উপলক্ষ বিশেষ। ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে উন্নয়নমুখী অংশীদারিত্বের একটি বড় সাফল্য হিসাবেও এই ঘটনাটি চিহ্নিত হয়ে থাকবে। ২০১৫ সালে আমার শ্রীলঙ্কা সফরকালে আমার বন্ধুস্থানীয় প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিঙ্ঘে তাঁর দেশে এই ধরণের একটি ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে আমার সঙ্গে কথা বলেছিলেন। আমি খুবই আনন্দিত যে ২০১৬-র জুলাইয়ে এই পরিষেবার প্রথম পর্যায়টি চালু হয় শ্রীলঙ্কার পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে। গত বছর শ্রীলঙ্কা সফরকালে ঐ দেশের মিত্র স্থানীয় জনসাধারণকে আমি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে হাসপাতালে ভর্তি প্রক্রিয়ার একটি আপৎকালীন পরিষেবা হিসাবে শ্রীলঙ্কার সর্বত্র অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা প্রসারের লক্ষ্যে ভারত কাজ করে যাবে। আমি আরও খুশি এই কারণে যে পরিষেবার এই পর্যায়ের সূচনা হল শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চল থেকে। অতীতের অশ্রুমোচন থেকে শুরু করে এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে আপনাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যেতে ভারত আগ্রহী। এই পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত সকলেই প্রশিক্ষণ লাভ করেছেন ভারতে। দক্ষতা এবং স্থানীয়ভাবে কর্মসংস্থানের চাহিদা পূরণের বিষয়টিও বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে। এই ধরণের একটি জরুরি পরিষেবার সূচনা এবং তার প্রসারের কাজে শ্রীলঙ্কার অংশীদার হয়ে ওঠার ঘটনা কোন সমাপতন মাত্র নয়। সুদিন বা দুর্দিন যখনই হোক না কেন, শ্রীলঙ্কার ডাকে প্রথমেই সাড়া দেওয়ার জন্য ভারত সর্বদাই প্রস্তুত থাকবে। বৈচিত্র্যপূর্ণ এই দুটি গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নেতা হিসাবে প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিঙ্ঘে এবং আমি সমাজের সকল স্তরে উন্নয়নের সুফলকে পৌঁছে দেওয়ার কাজে বিশ্বাসী। শ্রীলঙ্কার সকল নাগরিকের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণের লক্ষ্যে মাননীয় প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা এবং প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিঙ্ঘের প্রচেষ্টার আমি প্রশংসা করি। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দু’বার শ্রীলঙ্কা সফরের মধুর স্মৃতি আমি বহন করে চলেছি। যে স্নেহ ও ভালোবাসা আমার ওপর বর্ষিত হয়েছিল, তাতে আমি মুগ্ধ। প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে জাফনা সফরের সৌভাগ্যও আমার হয়েছিল। গত বছর রাষ্ট্রসঙ্ঘের ভেষক দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগও আমি লাভ করেছিলাম। এ সমস্ত কিছুই আমার কাছে এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা হয়ে রয়েছে। বিশ্বে সবক’টি জাতির অস্তিত্বই তাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্কযুক্ত। আমি যখন শ্রীলঙ্কার দিকে দৃষ্টিপাত করি, তখন শুধুমাত্র আমি আমাদের এক প্রতিবেশী রাষ্ট্রকেই দেখতে পাই না, বরং দক্ষিণ এশিয়া এবং ভারত মহাসাগরে আমাদের এই বিশেষ ও বিশ্বস্ত অংশীদারকেই আমি দেখতে পাই। শ্রীলঙ্কার সঙ্গে আমাদের উন্নয়ন সহযোগিতা আমাদের পারস্পরিক দর্শন ও চিন্তাভাবনার বাস্তবায়নের এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম বলেই আমি বিশ্বাস করি। জাফনার ছাত্র কংগ্রেসের আমন্ত্রণে ১৯২৭ সালে মহাত্মা গান্ধীর একটি উক্তি আমি স্মরণ করি। সেই সময় তাঁকে দক্ষিণের মাতারা থেকে উত্তরের পয়েন্ট পেড্রো পর্যন্ত যাত্রা করে আসতে হয়েছিল। আজ ঐ একই কথার আমি পুনরুচ্চারণ করতে চাই। আমাদের দুই দেশের সাধারণ মানুষ নিরন্তর একে অপরের পাশে দাঁড়াবে। পরস্পরকে আরও ভালোভাবে জানা এবং নিবিড় বন্ধু হয়ে ওঠার স্বার্থেই তা প্রয়োজন। ভারতে এসে নতুন ভারত গঠনের অভিজ্ঞতার শরিক হতে আমি আপনাদের উৎসাহিত করব। আগস্টের প্রথম দিকেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিঙ্ঘ ভারত সফরে আসছেন একথা জেনে আমি আনন্দিত। ভারতে আপনার এই সফর ও অবস্থান আনন্দদায়ক ও উপভোগ্য হয়ে উঠুক, এই শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে, ব্যাঙ্ক সংযুক্তিকরণের এক প্রস্তাব অনুসারে, ব্যাঙ্ক অফ বরোদা, বিজয়া ব্যাঙ্ক এবং দেনা ব্যাঙ্ককে, ব্যাঙ্ক অফ বরোদার সঙ্গে গ্রহীতা ব্যাঙ্ক হিসাবে এবং বিজয়া ব্যাঙ্ক ও দেনা ব্যাঙ্ককে হস্তান্তরিত ব্যাঙ্ক হিসাবে অনুমোদন করা হয়েছে। এই প্রথম ভারতের তিনটি ব্যাঙ্ককে একসঙ্গে সংযুক্ত করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হ’ল এবং সংযুক্ত এই ব্যাঙ্কটি ভারতের দ্বিতীয় বৃহত্তম রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক হিসাবে পরিণত হবে। এই সংযুক্তির ফলে বিশ্বব্যাপী প্রতিযোগিতার ক্ষেত্রে একটি শক্তিশালী ব্যাঙ্ক গড়ে উঠবে। গুজরাটের গান্ধীনগরে আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন কেন্টাকির গভর্নর শ্রী ম্যাট কেভিন। প্রধানমন্ত্রী এই প্রেক্ষিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অন্যান্য ক্ষেত্রে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধমান এবং সমঅভিমুখী এবং অংশীদারিত্ব বৃদ্ধির উল্লেখ করেন। শ্রী কেভিন প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রেক্ষিতে কেন্টাকি ও ভারতের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের অগ্রগতির বিষয়ে অবহিত করেন। ভারতে তৃণমূল পর্যায়ের নীতি-নির্ধারণে মহিলাদের অংশগ্রহণ সুনিশ্চিত করারজন্য গ্রামীণ ও শহুরে স্থানীয় সংস্থাগুলোতে আমরা মহিলাদের ন্যূনতম এক-তৃতীয়াংশপ্রতিনিধিত্ব প্রদান করেছি| একজন উদ্যোগীকে চিহ্নিত করার প্রধান গুণাবলী কী কী? আমরা আমদের বিভিন্ন সূচক যেমন নির্মাণ অনুমতি পাওয়া, ঋণ পাওয়া, সংখ্যালঘুবিনিয়োগকারীদের সুরক্ষা, কর প্রদান, চুক্তি প্রয়োগ করা, অর্থশূন্যতা স্থির করাইত্যাদি ক্ষেত্রে উন্নতি করেছি| আমরা কম নগদ অর্থনীতির দিকে ধীরে ধীরে এগিয়ে যাওয়ার জন্য কাজ করে যাচ্ছিএবং ভিম (বি.এইচ.আই.এম.) নামের এক ইউনিফায়েড পেমেন্ট ইন্টারফেস অ্যাপ-এর সূচনাকরেছি| এক বছরেরও কম সময়ে এই পদ্ধতি এখন প্রতিদিন ২৮০ হাজার লেনদেন করছে| আমরা ২০১৯ সালের মার্চ মাসের মধ্যে সমস্ত গ্রামীণ এলাকায় হাই-স্পিডব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট পরিষেবা দেওয়ার জন্যও একটি কর্মসূচি গ্রহণ করেছি| স্বাস্থ্যবিধি ও পরিচ্ছন্নতার উন্নয়নে আমাদের স্বচ্ছ ভারত মিশন এবং গ্রামীণও শহুরে আবাস যোজনা অভিযান, মর্যাদাপূর্ণ জীবনের প্রতি আমদের প্রতিশ্রুতিকেইউল্লেখ করে| সাগরমালা ও ভারতমালার মতো আমাদের পরিকাঠামো ও সংযোগকারী কর্মসূচিগুলিউদ্যোগীদের বিনিয়োগের জন্য অনেক বাণিজ্য-সুযোগ প্রদান করেছে| আমাদের সাম্প্রতিক ‘ বিশ্ব খাদ্যভারত ’ উদ্যোগ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প ওকৃষি ক্ষেত্রের অপচয় নিয়ে উদ্যোগীদের সঙ্গে সংযুক্ত হওয়ার ক্ষেত্রে সহায়তা করছে| আমার সরকার অনুধাবন করে যে, উদ্যোগের বিস্তৃতির ক্ষেত্রে সবার জন্য স্বচ্ছনীতি ও আইনের শাসন প্রদানকারী পরিবেশের প্রয়োজন| নয়াদিল্লি, ১২ মার্চ, ২০১৫ আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বেশ কয়েকটি ট্যুইটার মাধ্যমে জানান যে আগামী ২২ মার্চ, ২০১৫ তারিখের ‘মন কি বাত’ বেতার অনুষ্ঠানে তিনি কৃষকদের বিষয়ে কথা বলবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির দোয়ার্কায় ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন অ্যান্ড এক্সপো সেন্টারের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাবিত এই কেন্দ্রটি ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতি, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি আমাদের সচেতনতা বোধের প্রতিফলন হিসাবে গড়ে তোলা হবে। তিনি বলেন, এটি বিশ্বমানের পরিকাঠামো এবং সহজে ব্যবসার সুবিধার প্রতি সরকার যে গুরুত্ব দিয়ে থাকে, সেই দৃষ্টিভঙ্গীর পরিচায়ক হয়ে উঠবে। কেন্দ্রীয় সরকার যে নজিরবিহীনভাবে জাতির উন্নয়নের জন্য একগুচ্ছ অসাধারণ প্রকল্প রূপায়ণের কাজ শুরু করেছে তিনি তার উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি দেশের দীর্ঘতম সূড়ঙ্গ নির্মাণ, দীর্ঘতম গ্যাসের পাইপলাইন স্থাপন, বৃহত্তম মোবাইল হ্যান্ড সেট উৎপাদন কেন্দ্র এবং প্রতি ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কথা বলেন। তিনি বলেন, এই কাজগুলি নতুন ভারতের দক্ষতা এবং গতির প্রতীক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বেশ কিছু দেশে বৃহৎ সম্মেলন আয়োজনের জন্য বিস্তারিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে। বহুদিন ধরেই ভারতে এই ধরণের বিষয় নিয়ে তেমন চিন্তাভাবনা করা হয়নি। কিন্তু এই পরিস্থিতির পরিবর্তন হচ্ছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি বলেন, এই কাজের জন্য ঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত নেওয়া এবং তা অনতিবিলম্বে রূপায়ণ করা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কয়েকটি রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ককে একসঙ্গে মিলিয়ে দেওয়ার সাম্প্রতিক সিদ্ধান্তের উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এই বিষয়টি নিয়ে প্রায় আড়াই দশক ধরে চিন্তাভাবনা করা হলেও, তা রূপায়ণ করা হয়নি। তবে বর্তমান সরকার জাতীয় স্বার্থে কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে দ্বিধা করে না। গত চার বছরে যেভাবে দেশের সার্বিক উন্নয়ন ঘটেছে, তার কারণ জাতীয় স্বার্থকেই সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তিনি জোরের সঙ্গে বলেন, মানুষের স্বার্থে এই ধরণের কঠিন সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়া অব্যাহত রাখা হবে। তিনি বলেন, চ্যালেঞ্জ সত্ত্বেও দেশের অর্থনীতি অত্যন্ত শক্তি জমিতে দাঁড়িয়ে আছে। নবীন এই আই এ এস আধিকারিকদের অনেকেই সরকারি এই চাকুরিতে যোগদানের পূর্বে বেসরকারি সংস্থায় কাজ করে এসেছেন। আজ শ্রী সোমনাথট্রাস্টের ১১৬তম বৈঠকে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ট্রাস্টেরঅন্যান্য সদস্যদের মধ্যে এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন শ্রী লালকৃষ্ণ আদবানী, শ্রীঅমিত শাহ্‌, শ্রী কেশুভাই প্যাটেল, শ্রী পি কে লহেরি, শ্রী জে ডি পারমার এবং শ্রীহর্ষ নেওটিয়া। তিনি বলেন, সবক’টি বড় বড় শহরেই বিশেষ বিশেষমহোৎসব আয়োজনের প্রয়োজন রয়েছে। ১) টিসিআইএল-এর সি কর্পোরেশনমার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস প্রদেশে গঠিত হবে। তবে, একই সঙ্গে ইউএসএ-রঅন্যান্য প্রদেশেও ব্যবসা করার জন্য নথিভুক্তি থাকবে। ২) সি কর্পোরেশনে টিসিআইএল-এরলগ্নির হার হবে ১০০%, যা অর্থমূল্যে দাঁড়াবে পর্যায়ক্রমের ৫০ লক্ষ মার্কিন ডলার(৬৭.৬৮ টাকা বিনিময় মূল্যে ৩৩.৮৪ কোটি টাকার সমতুল)। ৩) টিসিআইএল ঋণদাতা/ব্যবস্থাসহায়ক/ভেন্ডরদের এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের জন্যবন্ড/অগ্রিম/পারদর্শিতা/গ্যারান্টি প্রভ্রৃতি ক্ষেত্রে নিলামে অংশগ্রহণের জন্য ৫০লক্ষ মার্কিন ডলার মূল্যের কাউন্টার গ্যারান্টি প্রদান করবে। নবগঠিত সি কর্পোরেশনপ্রাথমিকভাবে ১০০ লক্ষ মার্কিন ডলার আয় সহ ১০% হারে মুনাফা করবে বলে অনুমান করাহচ্ছে আর এই অঙ্কটা ক্রমশ কাজের আয়তনের ওপর নির্ভর করে বাড়তে থাকবে। ভারতেআপনাকে এবং আপনার প্রতিনিধিদের স্বাগত জানাতে পেরে আমি বিশেষভাবে আনন্দিত হয়েছি| ভারতেএটা আপনার প্রথম সরকারি সফর হতে পারে, কিন্তু আপনি ভারতে অপরিচিত নন অথবা ভারতআপনার কাছে অজানা নয়| তাই এই শীতের সন্ধ্যায় উষ্ণ অভ্যর্থনা জানিয়ে আমি এটাও বলতেচাই, ফিরে আসার জন্য স্বাগত! আগামীকয়েকদিন ভারতে আপনার ভ্রমণ ও সংযুক্তির অসাধারণ কর্মসূচি রয়েছে| আপনি ও আপনার প্রতিনিধিবর্গেরব্যাঙ্গালুরু, গুজরাট ও গোয়ায় অবস্থান ও অভিজ্ঞতা খুব ভালো হবে বলে আমি আশাবাদী| বিশেষভাবেআমি আশা করি, গোয়ায় আপনার সফর স্মরণীয় হবে এবং আপনার পূর্বপুরুষদের শেকড়ের সঙ্গেআপনি সংযোগ খোঁজে পাবেন| আপনাদেরসবাইকে বিশেষ ধন্যবাদ | আসন্ন রিও অলিম্পিকে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে সোমবার দেখা করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। নয়াদিল্লির মানেকশ’ সেন্টারে সম্ভাব্য ভারতীয় ক্রীড়া প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মিলিত হবেন তিনি। রিও অলিম্পিকের জন্য এ পর্যন্ত ১৩টি ক্ষেত্র থেকে নির্বাচিত হয়েছেন ১০০ জনের মতো ভারতীয় খেলোয়াড়। হরিয়ানার গুরুগ্রামেভারতীয় প্রতিরক্ষা বিশ্ববিদ্যালয়ের জমিতে যাত্রা বিরতি এবং যাত্রী ওঠানো-নামানোরউদ্দেশ্যে একটি বাস বে স্থাপনের প্রস্তাবে আজ সম্মতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। জয়পুর অভিমুখে দিল্লি-জয়পুর মহাসড়কের জাতীয় নিরাপত্তাপ্রহরা বাহিনীর সদর দপ্তরের আনুমানিক ১১ কিলোমিটার দূরে এই বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনকরা হচ্ছে। এখানে জাতীয় নিরাপত্তা সম্পর্কিত শিক্ষাক্রম চালু করার সঙ্গে সঙ্গেপ্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনা ও প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি সম্পর্কে শিক্ষাদানের ব্যবস্থাওথাকবে। রাজ্যসভার বিদায়ী সদস্যদের আনুষ্ঠানিকভাবে বিদায় সংবর্ধনা জানাতে রাজ্যসভার সাংসদদের সঙ্গে আজ উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীও। অভিজ্ঞতা তাঁদের সমৃদ্ধ করে তোলে এবং তা থেকে লাভবান হয় সমাজ তথা সমগ্র জাতি। বিদায়ী সাংসদদের জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা থেকে দেশ আগামীদিনেও বঞ্চিত হবে না বলে আশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের বিদায়ী সাংসদরা বহু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেই অবদান রেখেছেন। এই সাংসদদের উপস্থিতিতে ‘জিএসটি বিল’ এবং ‘কম্পেনসেটরি অ্যাফরেস্টেশন ফান্ড বিল’ দুটি সম্পর্কে যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণের সুযোগ পাওয়া গেলে আরও ভালো হত বলে মনে করেন তিনি। ক) সংশোধিতসংবিধানের ২৬৯ ক নং অনুচ্ছেদ অনুসারে জিএসটি পর্ষদ গঠন, খ) নতুনদিল্লিতেকার্যালয় সহ জিএসটি পর্ষদ সচিবালয় গঠন গ) রাজস্ব সচিবকে পদাধিকারবলেজিএসটি পর্ষদের সচিব নিযুক্ত করা ঘ) কেন্দ্রীয় উৎপাদনশুল্ক ও অন্তঃশুল্ক পর্ষদ (সিবিইসি)-এর চেয়ারম্যানকে জিএসটি পর্ষদের স্হায়ীআমন্ত্রিত সদস্য (ভোটাধিকার বর্জিত) হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা ঙ) জিএসটি পর্ষদেরসচিবালয়ে অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের পদ সৃষ্টি করা (কেন্দ্রীয় সরকারের অতিরিক্ত সচিব পর্যায়ের) এবং জিএসটিপর্ষদের সচিবালয়ে চারটি কমিশনার (কেন্দ্রীয় সরকারের যুগ্ম সচিব পর্যায়ের)পদ সৃষ্টিকরা। জন-অংশীদারিত্বের মানসিকতাকে সঙ্গী করে উন্নয়নমূলক কাজকর্মের প্রতিযোগিতায় সৃষ্টি হয়েছে এক ইতিবাচক বাতাবরণ। কঠিন বর্জ্যের ব্যবস্থাপনার জন্য নগর কর্তৃপক্ষগুলির বিশেষভাবে সচেষ্ট হওয়া প্রয়োজন বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভারত ও তাজিকিস্তানের মধ্যে দ্বৈতকর বিলোপ ও আয়কর ফাঁকি রোধে সম্পাদিত চুক্তি সংশোধন সংক্রান্ত ব্যবস্হায় অনুমোদনকরেছে। মহামান্য ট্রাইব্যুনালের নির্দেশ অনুসারে এ ভি এম সঞ্জয় শর্মার পদোন্নতির বিষয়টি এর সঙ্গে যুক্ত। নয়াদিল্লি, ২৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, পররাষ্ট্র বিষয়ক এবং বৈদেশিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ কৌশল হিসেবে সফ্ট পাওয়ারের সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করার সময় উপস্থিত হয়েছে। গতকাল এখানে ফিকি অডিটোরিয়ামে প্রথম আন্তর্জাতিক রামায়ণ মেলার উদ্বোধন করে তিনি ভাষণ দিচ্ছিলেন। তিনি বলেন, বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তোলার সময় ভারত’কে তার মহান পরম্পরা ও সংস্কৃতির প্রতি আরও অধিক ব্যক্তিগত ও সুদৃঢ়ভাবে গুরুত্ব দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সকল দেশের সংস্কৃতিতে গৌতমবুদ্ধ, রাম ও রামায়ণ আছেন, তাদের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক রয়েছে এবং এঁদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক বেড়ে চলেছে। তিনি বলেন, সফ্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে ভারতের কাছে এমন অনেক কিছু রয়েছে যা বিশ্বের সামনে তুলে ধরা যাতে পারে। ভারতীয় টেলিভিশনে যখন ‘রামায়ণ’ ধারাবাহিক দেখানো হত, সেই দিনগুলির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কাহিনী সব বয়োসীমার ও সব জায়গার মানুষকে এক জায়গায় নিয়ে এসেছিল। নির্ভিকতার সঙ্গে মহিলাদের সম্মান রক্ষাকারী রামায়ণের জটায়ু চরিত্রের উদাহরণ দিয়ে তিনি বলেন, রামায়ণের গল্প মহিলাদের প্রতি সম্মান দেখানোর বার্তা দেয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘রাম রাজ্যের’ ধারণা ছিল এক দূরদর্শিতা, যা আজও সমান প্রাসঙ্গিক। সকলেই তাদের ধর্ম ও তাদের কর্তব্য পালন করছে”। সকল নারী ও পুরুষ অন্যান্যদের সেবার জন্য”। সামাজিক আচরণের বিষয়ে বলা হয়েছে যে, “রামের প্রভাবে সবরকম বৈষম্য ও মতভেদ দূর হয়েছে এবং আর কেউ অন্যকে ঘৃণা করে না”। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রামায়ণ এক আদর্শ সমাজের প্রতিটি বিষয়ের ওপর সুবিচার প্রদান করেছে। তিনি বলেন, দিল্লির সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হলে সারা ভারতের সঙ্গেই যোগাযোগ গড়ে ওঠে, এই ধারণা ত্যাগ করা প্রয়োজন। পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ এই মেলার গুরুত্ব ও প্রাসঙ্গিকতা ব্যাখ্যা করেন। ভারতেরপ্রথম রাষ্ট্রপতি হিসাবে জাতি গঠনের বছরগুলিতে তাঁর নেতৃত্ব ও পরামর্শ ছিল বিশেষমূল্যবান। নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি কুন্দন শাহের প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করলেন| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সক্রিয় প্রশাসন ও সময়োচিত রূপায়ণের জন্য তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক মঞ্চ ‘প্রগতি’র মাধ্যমে ২৯তম পর্যালোচনা বৈঠকে পৌরহিত্য করেন। প্রধানমন্ত্রী টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রের অভিযোগ নিষ্পত্তির কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। তাঁকে এ বিষয়ে কাজের অগ্রগতি এবং সাম্প্রতিক প্রযুক্তির ব্যবহার নিয়ে অবহিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন- টেলিযোগাযোগ ক্ষেত্রের বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সাম্প্রতিকতম প্রযুক্তি ব্যবহার করা উচিত। পরিষেবা প্রদানকারীদের গ্রাহকদের সন্তুষ্টির জন্য কাজ করার ওপর তিনি জোর দেন। ২৮তম প্রগতি বৈঠকে ১১.৭৫ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ যুক্ত বিভিন্ন প্রকল্পের পর্যালোচনা করা হয়েছিল। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রের অভিযোগ নিষ্পত্তি বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। আজ ‘প্রগতি’র ২৯তম বৈঠকে, প্রধানমন্ত্রী রেল, নগরোন্নয়ন, সড়ক, বিদ্যুৎ ও কয়লা ক্ষেত্রের ৮টি গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। এই প্রকল্পগুলি পশ্চিমবঙ্গ সহ দেশের ৯টি রাজ্যে রূপায়িত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী আজ প্রধানমন্ত্রী খনিজ ক্ষেত্র কল্যাণ যোজনা এবং জেলা খনিজ সংস্হার কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কাশ্মীরের পুলওয়ামায় কেন্দ্রীয় সংরক্ষিত পুলিশ বাহিনী (সিআরপিএফ)-র জওয়ানদের ওপর হামলার কড়া নিন্দা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “পুলওয়ামায় সিআরপিএফ জওয়নাদের ওপর এই হামলা অত্যন্ত জঘন্য। আমি কাপুরুষোচিত এই হামলার কড়া নিন্দা করছি। আমাদের সাহসী নিরাপত্তা কর্মীদের এই আত্মবলিদান ব্যর্থ হবে না। সমগ্র দেশ দূঃসাহসী শহীদ এই জওয়ানদের পরিবারের পাশে রয়েছে। “ঐতিহাসিকত্রিশত রান করার জন্য করুণ নায়ার’কে অভিনন্দন! দেশের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য তাঁদের ভূমিকার প্রশংসা করেন। নতুন ভারত গঠনে আধুনিক পরিকাঠামোর নিরাপত্তা সিআইএসএফ জওয়ানদের হাতে সুরক্ষিত বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সহযোগিতার জন্য জনগণের কাছে আবেদন জানান। নিরাপত্তা ব্যবস্হায় ভিআইপি সংস্কৃতি বড়ো অন্তরায়। তাই নাগরিকদের সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। দেশের গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোর নিরাপত্তায় সিআইএসএফ-এর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাহিনীর সদস্যরা বিপর্যয় মোকাবিলা, মহিলাদের নিরাপত্তা সহ নানা ক্ষেত্রে তৎপর। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী কেরালার বন্যাত্রাণে এবং নেপাল ও হাইতিতে ভূমিকম্পের ত্রাণ কাজে সিআইএসএফ-এর জওয়ানদের ভূমিকার কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে তাঁর সরকার দায়বদ্ধ। এই প্রসঙ্গে বাহিনীগুলির আধুনিকীকরণ এবং তাঁদের নানা কল্যাণমূলক কাজে সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করতে তাঁর সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, পুলিশ এবং আধা-সামরিক বাহিনীর সদস্যদের আত্ম-বলিদানের স্বীকৃতি এই জাতীয় পুলিশ স্মারক। জাতীয় যুদ্ধ স্মারক এবং জাতীয় পুলিশ স্মারকের মতো সৌধগুলি নিরাপত্তা বাহিনীর আত্মত্যাগের বিষয়ে নাগরিকদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলে। সিআইএসএফ বাহিনীতে আরও মহিলা সদস্যের অন্তর্ভুক্তির উদ্যোগের তিনি প্রশংসা করেন। কন্যাকুমারীরবিবেকানন্দ কেন্দ্রের রামায়ণ দর্শন প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বৃহস্পতিবার একভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্য রাখলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীতাঁর ভাষণে বলেন, ১২ জানুয়ারি অন্য আর পাঁচটি দিনের মতো একটি সাধারণ দিন মাত্র নয়।স্বামী বিবেকানন্দের বলিষ্ঠ চিন্তাদর্শ আজও বহু মানুষের মানসিকতা গঠনে সাহায্য করেচলেছে। একটি নবীন দেশ হিসেবে ভারতের প্রয়োজন আধ্যাত্মিক তথা বস্তুনিষ্ঠভাবেউন্নয়নের পথে এগিয়ে চলা। শ্রী মোদী বলেন, স্বামী বিবেকানন্দের চিন্তাভাবনা দেশেরতরুণ সমাজকে সর্বদাই অনুপ্রাণিত করবে জাতি গঠনের কাজে। এই উপলক্ষে,সাধু থিরুভাল্লুভার এবং শ্রী একনাথ রানাডে’র উদ্দেশেও শ্রদ্ধা নিবেদন করেনপ্রধানমন্ত্রী। শনিবার১৭ সেপ্টেম্বর ছিল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর জন্মদিন। এই দিনটি তিনিকাটালেন গুজরাটে। সমাজেরবিভিন্ন স্তরের মানুষের কাছ থেকে সোশ্যাল মিডিয়া এবং নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ-এরমাধ্যমে অসংখ্য শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা লাভ করেছেন প্রধানমন্ত্রী । আদিবাসীকল্যাণে কয়েকটি কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে দাহোর জেলার লিমখেরায় এক বিশালজনসমাবেশেও ভাষণ দেন তিনি। দরিদ্রও প্রান্তিক মানুষদের কল্যাণে তাঁর সরকার যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এ কথা পুনরায় স্মরণকরিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’-এর মন্ত্র এখনপ্রতিধ্বনিত হচ্ছে দেশের সর্বত্র। নবসারিতেদিব্যাঙ্গদের মধ্যে সহায়ক সাজসরঞ্জামও বন্টন করেন তিনি। এইধরনের অনুষ্ঠান আয়োজন করার জন্য নবসারির উদ্যোক্তাদের অভিনন্দন জানিয়েপ্রধানমন্ত্রী বলেন যে এদিন এই কাজে এক বিশেষ সাফল্যের রেকর্ড গড়া হল । অতীতে পঠনপাঠনেরক্ষেত্রে আগ্রহের জন্য নবসারির নাম ও খ্যাতি ছড়িয়ে পড়েছিল চারদিকে এবং এদিনদিব্যাঙ্গদের জন্য যত্ন ও চিন্তাভাবনার নিরিখে এই স্থানটি আবার তার বিশিষ্টতাপ্রমাণ করল। চক্রাকার-বিশিষ্ট এই মেট্রো প্রকল্পটি বেঙ্গলি স্কোয়ার – বিজয়নগর – ভাওয়ারসালা – বিমানবন্দর – পটাশিয়া – বেঙ্গলি স্কোয়ার পর্যন্ত বিস্তৃত হবে। এই মেট্রো পরিষেবায় মোট ৩০টি স্টেশন থাকছে। এই প্রকল্প রূপায়ণে আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ৭ হাজার ৫০০ কোটি ৮০ লক্ষ টাকা। প্রকল্পটির কাজ চার বছরে সম্পূর্ণ হবে। ইন্দোর শহরে মেট্রো পরিষেবা চালু হলে সুলভে বিশ্বাসযোগ্য, নিরাপদ এবং নির্ঝঞ্ঝাট যাতায়াতের সুবিধা পাওয়া যাবে। ২৬টিদ্বীপের সার্বিক উন্নয়নে পদক্ষেপ গ্রহণের বিষয়গুলি মঙ্গলবার এক উচ্চ পর্যায়েরবৈঠকে খতিয়ে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈঠকেবিভিন্ন দ্বীপের সার্বিক ও সামগ্রিক বিকাশে নীতি আয়োগ, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক এবং অন্যান্য পদস্থ আধিকারিকদের পক্ষ থেকে এক বিশেষ উপস্থাপনা পেশ করা হয়। আন্দামান ওলাক্ষাদ্বীপ সহ ভারতীয় উপকূল রেখার বিভিন্ন এলাকায় অবস্থিত এই ২৬টি দ্বীপ। বৈঠকেসংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের পক্ষ থেকে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয় যে, প্রাথমিকপরিকাঠামো গড়ে তুলতে এবং কৃষি ও জৈব কৃষি পদ্ধতি, মৎস্য চাষ, পর্যটন ও দূষণমুক্তজ্বালানি উৎপাদনের মতো ক্ষেত্রগুলিকে কেন্দ্র করে উন্নয়ন প্রকল্পগুলি ছকে ফেলাহবে। ভারতেরদ্বীপ সম্পদগুলির প্রকৌশলগত গুরুত্বের ওপর বিশেষ জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে,এই সমস্ত অঞ্চলে পর্যটন শিল্পের প্রসারের ব্যাপক সম্ভাবনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল বারাণসী, কানপুর ও গাজিয়াবাদ সফরে যাবেন। একইসঙ্গে কাশির বিশ্বনাথ মন্দির সংলগ্ন রাস্তা ও সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্হাপন করবেন। পরে প্রকল্পস্হানগুলিও ঘুরে দেখবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বারাণসীতে দীনদয়াল হস্তকলা শঙ্কুলে ন্যাশনাল উইম্যান লাইভলিহ্যুড মিট ২০১৯ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে শনিবার ফ্রান্সের সশস্ত্রবাহিনীর মন্ত্রী শ্রীমতি ফ্লোরেন্স পার্লে সাক্ষাত করলেন| দুই নেতা পারস্পরিক আগ্রহের বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক বিষয় নিয়ে আলোচনাকরেন| দেবী দুর্গার মাহাত্ম্য বর্ণনায় ‘শ্রী-দুর্গা-সপ্তসতী’ নামে একটি সচিত্র গ্রন্থ আজ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজস্থানের এক গবেষক ডঃ সন্দীপ যোশী এই গ্রন্থটির রচয়িতা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে সৌজন্য সাক্ষাৎ করলেন ‘এশিয়ান ইনফ্রাস্ট্রাকচার ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংক’ (এ.আই.আই.বি.)-র মনোনীত সভাপতি মি. জিন লিকুন| সর্বসম্মত ভাবে এ.আই.আই.বি.’র প্রথম সভাপতি হিসাবে মনোনীত হওয়ার জন্য শ্রী লিকুনকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী| উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে দু’দেশের মধ্যে সমঝোতাপত্রটি স্বাক্ষরিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার মহাকর্ষীয় তরঙ্গ সম্পর্কে গবেষণার জন্য ‘লিগো-ইন্ডিয়া’ মেগা সায়েন্স প্রস্তাবে ‘নীতিগতভাবে’ সম্মতি জানিয়েছে। কয়েকদিন আগে মহাকর্ষীয় তরঙ্গ নির্ধারণের জন্য যে ঐতিহাসিক আবিষ্কারের ঘটনাটি ঘটেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা এই অনুমোদন সেই আবিষ্কারের সঙ্গে সাজুয্য রেখেই প্রদান করেছে। শ্রী মোদী গতকাল রাষ্ট্রপতি ভবনে রাজ্যপালদের সম্মেলনে ভাষণ দিচ্ছিলেন। শ্রী মোদী কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধান নীতিগুলির কথা উল্লেখ করে বলেন, এগুলি দেশকে বহুমুখী আর্থিক বিকাশের পথে নিয়ে যাবে। তিনি বলেন, `সকলের জন্য এক নীতি`র পথ থেকে সরকার সরে এসেছে এবং নিতি আয়োগের মাধ্যমে সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো গঠনের লক্ষ্যে কাজ করছে। নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিস্তানে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের বাড়বাড়ন্ত এবং ভারতে সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের সঙ্গে এর জড়িত থাকার বিষয়টি নিরাপত্তার কাছে গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ। তিনি বলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর সংঘর্ষ বিরতি লঙ্ঘনের ঘটনা অব্যাহত রয়েছে। সীমান্ত বরাবর অনুপ্রবেশ দমনে সরকার একটি বহুমুখী প্রয়াস গ্রহণ করেছে বলেও তিনি জানান। যে রাজ্যগুলি উগ্র-বামপন্থা সমস্যার মুখোমুখী হচ্ছে তাদেরকে এই সমস্যার সমাধানে একটি সমন্বয়মূলক প্রয়াস গ্রহণের জন্য তিনি আহ্বান জানান। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ব্যাপক সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতে তিনি এই অঞ্চলে পরিকাঠামোগত ঘাটতি দূর করার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়ে বলেন, `টিম ইন্ডিয়া`র অঙ্গ হিসেবে এই অঞ্চল যাতে কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে চলতে পারে তার জন্য সহযোগিতা করতে হবে। গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির সফল রূপায়ণে তিনি রাজ্যপালদের অবদান যোগানোর অনুরোধ জানান। উদাহরণস্বরূপ তিনি গ্রামীণ বিদ্যুত্ প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন এবং জানান যে ২০০০০ গ্রামে এখনও বিদ্যুত্ পৌঁছয়নি। সড়ক, রেল ও শক্তির ক্ষেত্রেও তিনি অসমাপ্ত প্রকল্পগুলির উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই বিলটি পেশকরার প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয়। কমনওয়েলথ গেমস্‌-এ পুরুষদের ৯৪ কিলোগ্রাম ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় ব্রোঞ্জপদক জয়ী শ্রী বিকাশ ঠাকুর’কে অভিনন্দিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “ভারতীয় ভারোত্তোলকদের কৃতিত্বে আমরা আরও আরও বেশি মাত্রায় গর্ব অনুভবকরছি। পুরুষদের ৯৪ কিলোগ্রাম ভারোত্তোলন বিভাগে ব্রোঞ্জ পদক জয়ী বিকাশ ঠাকুর’কেঅভিনন্দন। ‘রাজেন্দ্র কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে’র নাম বদল করে ‘ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদকেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়’ রাখার জন্য রাজেন্দ্র কেন্দ্রীয় কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় বিল, ২০১৫-কে সরকারিভাবে সংশোধনের বিষয়টিতে আজ কর্মপরবর্তী অনুমোদন দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। অরোভিলেরসুবর্ণ জয়ন্তী সমারোহ সপ্তাহে আজ এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। ভারতেরআধ্যাত্মিক নেতৃত্ব সম্পর্কে শ্রী অরবিন্দের চিন্তাভাবনা আজও আমাদের অনুপ্রাণিতকরে। শ্রীঅরবিন্দের বিশাল কর্মকাণ্ড ও চিন্তাভাবনা স্মরণ করার আজ হল একটি বিশেষ দিন। রবীন্দ্রনাথঠাকুরের একটি উদ্ধৃতি এখানে স্মরণীয় : “অরবিন্দরবীন্দ্রের লহ নমস্কার! আজ এখানে এইবিশাল সমাবেশ সেই চিন্তাভাবনারই এক বাস্তব প্রতিফলন। যুগ যুগ ধরে ভারত হয়ে উঠেছেবিশ্বের এক আধ্যাত্মিক গন্তব্য। নালন্দা এবং তক্ষশিলার মতো প্রাচীনবিশ্ববিদ্যালয়গুলি সাদরে আহ্বান জানিয়েছে বিশ্বের সকল প্রান্তের শিক্ষার্থীদের। বিশ্বেরবহু ধর্মের উৎপত্তি হয়েছে এখানেই। দৈনন্দিন কাজকর্মের মধ্যেও একটি আধ্যাত্মিক পথখুঁজে নেওয়ার জন্য তা উদ্বুদ্ধ করেছে সকল শ্রেণীর মানুষকে। ভারতের এইমহান ঐতিহ্যের স্বীকৃতিতেই ২১ জুন দিনটি সম্প্রতি আন্তর্জাতিক যোগ দিবস রূপে ঘোষণাকরেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। সমস্তরকম সীমারেখা এবং পরিচিতির বিভেদ ও পার্থক্য অতিক্রম করেপুরুষ ও নারী, নবীন ও প্রবীণ – সকলেই একত্রিত করেছে অরোভিল। অরোভিল-এরমূল সনদটি ফরাসী ভাষায় হাতে লিখে প্রস্তুত করেছিলেন শ্রীমা স্বয়ং। ঐ সনদ অনুযায়ী, অরোভিল-এরজন্য পাঁচটি বিশেষ নীতিকেচিহ্নিত করেছেন তিনি। ১৯৬৮ সালে অরোভিল-এরউদ্বোধন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন বিশ্বের ১২৪টি দেশের প্রতিনিধিরা। আজ আমি জানতেপেরেছি যে বর্তমানে এখানে বাস করছেন ৪৯টি দেশের ২,৪০০ জনমানুষ। অরোভিলপ্রতিষ্ঠার তৃতীয় নীতিটি হল এই, যে অতীত এবং ভবিষ্যতের মধ্যে এক সংযোগ সেতু গড়েতুলবে এই শহরটি। ১৯৬৮ সালে অরোভিল প্রতিষ্ঠাকালে ভারত তথা সমগ্র বিশ্বের সেই সময়েরঅবস্থানের দিকে যদি কেউ একবার দৃষ্টিপাত করেন, তাহলে দেখতে পাবেন যে সমগ্র বিশ্বতখন ছিল দ্বন্দ্বদীর্ণ এবং সেটি ছিল এক ঠান্ডা যুদ্ধের সময়কাল।অরোভিল-এরচিন্তাভাবনার পিছনে ছিল এক বিশেষ দৃষ্টিভঙ্গি। সমগ্র বিশ্বকে বাণিজ্য, পর্যটন এবংযোগাযোগের মাধ্যমে এক সংহতির অবস্থানে প্রতিষ্ঠা করাই ছিল তার লক্ষ্য। এক ক্ষুদ্রপরিসরের মধ্যে সমগ্র মানবজাতিকে আশ্রয়দানের এক বিশেষ চিন্তাদর্শ ছিল অরোভিল-এর। বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তির মধ্য দিয়ে বৈষয়িক ক্ষেত্রে বিশ্বের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে সামাজিকস্থিতি ও শৃঙ্খলার লক্ষ্যে আধ্যাত্মিক সমন্বয় ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পেতে থাকবে। এই অরোভিল-এরমধ্যে বস্তুতান্ত্রিকতা ও আধ্যাত্মিকতার সমন্বয় ও সহাবস্থান ঘটেছে এক সম্প্রীতিরপরিবেশেই। অরোভিল-এরপঞ্চম মূল নীতিটি হল এই যে, তা হয়ে উঠবে নিরন্তর শিক্ষা ও অগ্রগতির একটি বিশেষস্থান যেখানে কোন কিছুই থেমে থাকতে পারে না। মানবজাতিরঅগ্রগতির জন্য প্রয়োজন নিরন্তর চিন্তাভাবনা ও তার পুনর্মূল্যায়ন যাতে একটিমাত্র চিন্তাবা ভাবনাকে আশ্রয় করেই মানব মন সন্তুষ্ট থাকতে পারে না। মানববৈচিত্র্য ও চিন্তাদর্শের বিভিন্নতার একত্রসমাবেশ ও সমাহারের মধ্য দিয়েই অরোভিলবিতর্ক ও আলাপ-আলোচনার পরিসরকে স্বাভাবিক করে তুলেছে। ভারতীয় সমাজব্যবস্থা খুব স্বাভাবিকভাবেই বৈচিত্র্যময়। আলাপ-আলোচনা ও দার্শনিকতার ঐতিহ্যকে তালালন করে এসেছে। বিশ্ব বৈচিত্র্যের মধ্যে সুপ্রাচীন ভারতীয় পরম্পরার মিলন ঘটিয়েছে অরোভিল। ভিন্ন ভিন্নধর্ম ও সংস্কৃতির সহাবস্থানকে স্বীকার করে নেওয়ার পাশাপাশি, সেগুলির মধ্যেপারস্পরিক শ্রদ্ধার মানসিকতাও গড়ে তুলেছে ভারত। জীবনভর সীমাহীন এক শিক্ষারপীঠস্থান রূপেই প্রতিষ্ঠা ঘটেছে অরোভিল-এর। সুপ্রাচীনসময়কালে আমাদের দেশের মুনি-ঋষিরা কোন বড় ধরনের কর্মপ্রচেষ্টায় নিযুক্ত হওয়ার আগে যজ্ঞানুষ্ঠানকরতেন। সময়ে সময়ে ঐ যজ্ঞগুলি ইতিহাসের পথও নির্ধারণ করে দিয়েছে। ঐক্যেরলক্ষ্যে এই ধরনেরই একটি যজ্ঞের সূচনা হয়েছিল ঠিক ৫০ বছর আগে। পুরুষ-নারীনির্বিশেষে সকলেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সেখানকার মাটি সংগ্রহ করে এনেছিল। সেইমাটি সংমিশ্রণের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছিল ঐক্যের পথে যাত্রা। বহু বছরধরেই বিভিন্ন ভাবে ইতিবাচক অভিজ্ঞতা লাভ করে এসেছে সমগ্র বিশ্ব। দেশে গুণগতশিক্ষার প্রসারে আপনারা প্রচুর কাজ করে এসেছেন। অরোভিল-এর ৫০ বছর পূর্তি উপলক্ষেআমি আশা করব যে এই লক্ষ্যে আপনাদের এই কর্মপ্রচেষ্টা আরও বহুগুণ বৃদ্ধি পাবে। শিক্ষারমাধ্যমে নবীনদের কাছে সেবামূলক কর্মসূচি পৌঁছে দেওয়াই হবে শ্রী অরবিন্দ এবংশ্রীমায়ের প্রতি বিশেষ শ্রদ্ধা প্রদর্শন। আপনাদেরঅনেকেই, এমনকি আমি নিজেও অগোচরেই আপনাদের শিক্ষা প্রচেষ্টাকে অনুসরণ করে এসেছি। শ্রীঅরবিন্দের একনিষ্ঠ শিষ্য শ্রী কিরীটভাই যোশী এবং শ্রীমা – উভয়েই ছিলেন বিশিষ্টশিক্ষাবিদ। আমি যখনগুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন তিনি ছিলেন আমারও শিক্ষা উপদেষ্টা। কিন্তুদুঃখের বিষয়, তিনি আজ এখন আমাদের মধ্যে আর নেই। কিন্তু ভারতের শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁরসেই অবদান স্মরণীয় হয়ে রয়েছে। এই উদ্ধৃতিরসূত্র ধরে আমি বলতে চাই যে দেশের সাধারণ নাগরিকদের ক্ষমতায়নে অরোভিল-এর এইচিন্তাদর্শ অক্ষুণ্ণ ও অমলিন থাক। দূর-দূরান্তথেকে মানুষ এখানে সমবেত হোন তাঁদের নতুন নতুন চিন্তাভাবনাকে সঙ্গে করে। আর, অরোভিলহয়ে উঠুক এই সমস্ত চিন্তাভাবনার এক সমন্বয়ভূমি। সমগ্রবিশ্বকে তার শিক্ষাদর্শের আলোকবর্তিকা নিয়ে পথ প্রদর্শন করুক অরোভিল। মানব মনেরসংকীর্ণ দেওয়াল ভেঙে দেওয়ার আহ্বান জানায় এই বিশেষ কেন্দ্রটি। ঐক্যবদ্ধ মানবজাতিরসম্ভাবনাগুলির উদযাপনে সকলকেই আমন্ত্রণ জানাক এই বিশেষ কেন্দ্রটি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটি নববর্ষ উপলক্ষে গুজরাটবাসীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “গুজরাটের সব মানুষকে নববর্ষের শুভেচ্ছা। আসন্ন বছরটি আপনাদের সকলের যাবতীয় প্রত্যাশা পূরণ করুক। প্রত্যেকেই সুস্থ এবং খুশি থাকুন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জম্মু-কাশ্মীরে অমরনাথ যাত্রীদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা করেছেন। তিনি জম্মু-কাশ্মীরের রাজ্যপাল শ্রী এন এন ভোরা এবং মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতীমেহবুবা মুফতির সঙ্গেও কথা বলেন এবং সব ধরনের সহায়তার আশ্বাস দেন। তিনি বলেন, “ভারতএই ধরনের কাপুরুষোচিত হামলা এবং ঘৃণার খারাপ চক্রান্তে কখনও ভেঙে পড়বে না। জম্মু-কাশ্মীরেশান্তিপূর্ণ অমরনাথ তীর্থযাত্রীদের ওপর নৃশংস হামলা বেদনা জানানোর ভাষা নেই।সকলেরই উচিৎ এই হামলাকে তীব্র নিন্দা করা। দেশের জনগণকে ইংরেজী নববর্ষের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “২০১৬-র প্রারম্ভে আমি সকলকে আমার শুভেচ্ছা এবং অভিনন্দন জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল গুয়াহাটি সফর করবেন। তিনি সেখানেউত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির বিশেষত, আসাম, অরুণাচল প্রদেশ, নাগাল্যান্ড ওমণিপুরের বন্যা পরিস্থিতি এবং ত্রাণকার্য সম্পর্কে উচ্চ পর্যায়ের একগুচ্ছ বৈঠকেপৌরহিত্য করবেন। প্রধানমন্ত্রীর ৭ নম্বর রেস কোর্স রোডের বাসভবন পঞ্চবটীর চত্বরে আজ তারা আলাপচারিতায় মিলিত হন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন তরুণরা বেশ উৎসাহের সঙ্গেই। দিল্লির মতো আধুনিক পরিকাঠামো ব্যবস্থায় জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যটির উন্নয়ন ও উত্তরণ ঘটুক এই আশা তারা বারবার ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আমি ১০-১২ নভেম্বর, ২০১৬ বার্ষিক সম্মেলনে যোগ দিতে জাপানসফরে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এ আমার দ্বিতীয় জাপান সফর। জাপানের সঙ্গে আমাদের বিশেষ কৌশলগত ও বিশ্বায়িত অংশীদারিত্বরয়েছে। ভারত ও জাপান একে অপরকে সুপ্রাচীন বৌদ্ধঐতিহ্য, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ ও উন্মুক্ত অংশগ্রহনমূলক এবং বিধিবদ্ধ বিশ্ব ব্যবস্থাপনারপ্রতি দায়বদ্ধতা র মধ্যে দিয়েদেখে থাকে । এই সফরে আমি ম হামান্য জাপান সম্রাটের সঙ্গেও দেখা করার সুযোগ পাবো। ১১ইনভেম্বর টোকিওতে আমি য খ ন জাপানেরপ্রধানমন্ত্রী শিনজো আবের সঙ্গে মিলিত হবো, সেই বৈঠকে নিশ্চিতভাবেই দুদেশের দ্বিপাক্ষিকস্বার্থ সংশ্লিষ্ট সমস্ত বিষয়ের ইতিবাচক পর্যালোচনার দিকে তাকিয়ে আছি। ১২ই নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী ও আমি কোবেতে মুম্বাই-আহমেদাবাদউচ্চগতির রেল পরিষেবা প্রযুক্তির আতুরঘর শিনকানসেন পরিদর্শনে যাবো। সেখাকারকাওয়াসাকির ভারি শিল্প সুবিধার ক্ষেত্র, যেখানে উচ্চগতি সম্পন্ন রেলওয়ে তৈরি হল,সেটাও পরিদর্শন করবো। আমাদের মধ্যে মজবুত সহযোগিতার ক্ষেত্রে উচ্চগতির রেলপরিষেবায় সহযোগিতা একটি উজ্জ্বল উদাহরন। ডঃবাবাসাহেব আম্বেদকর জন্মজয়ন্তীর প্রাক্কালে দিল্লির ২৬, আলিপুর রোডে আগামীকাল ডঃআম্বেদকর জাতীয় স্মৃতিসৌধের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এইবিশেষ স্থানটিতেই ডঃ আম্বেদকর ১৯৫৬-র ৬ ডিসেম্বর মহাপরিনির্বাণ লাভ করেছিলেন। পরে, ২০১৬-র ২১ মার্চসেখানে ডঃ আম্বেদকর জাতীয় স্মৃতিসৌধ নির্মাণের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। ভারতীয়সংবিধানের স্রষ্টা বাবাসাহেব আম্বেদকরের এই স্মৃতিসৌধকে একটি গ্রন্থের আদলেনির্মাণ করা হয়েছে। এখানে রয়েছে এক বিশেষ সংগ্রহশালা যেখানে স্থিরচিত্র,চলচ্চিত্র, শ্রুতিদৃশ্যমাধ্যম এবং মাল্টি-মিডিয়া প্রযুক্তির সাহায্যে ডঃআম্বেদকরের জীবন ও অবদানকে সুপরিস্ফুট করে তোলা হয়েছে। স্মৃতিসৌধেরমধ্যে রয়েছে একটি ধ্যানকক্ষও। এই নতুন বছর তাঁদের জন্য আনন্দও সমৃদ্ধি নিয়ে আসুক এই কামনাই করি। পবিত্র চেতি চাঁদ উপলক্ষে আমার সিন্ধ্রি বন্ধুদের জানাই শুভকামনা। আমরা ভগবান ঝুলেলাল-এর প্রতি প্রণত হই এবং তাঁর স্বর্গীয় আশীর্বাদ প্রার্থনা করি। মহারাষ্ট্র গুড়ি পাড়ওয়া উপলক্ষে সকল বন্ধুদের জন্য রইল শুভেচ্ছা। আগামী বছর সুখ ও সাফল্যে পরিপূর্ণ হয়ে ঘটনাবহুল হয়ে উঠুক এই কামনা করি। উগাড়ির বিশেষ দিবস উপলক্ষে প্রত্যেককে জানাই অভিনন্দন। নতুন বছর আমাদের সমাজে শান্তি ও সমৃদ্ধি বয়ে নিয়ে আসুক। আমার নাগরিক বন্ধুদের জানাই নভরেহ্‌-এর অভিনন্দন। আগামী বছরটি আমাদের জীবনে সুখ ও সম্প্রীতি বৃদ্ধি করুক এই কামনা করি। মণিপুরের অসাধারণ মানুষজনকে সাজিবু চেইরাওবা-র অভিনন্দন। চীনের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল উই ফিংঘে মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী প্রতিরক্ষা ও সামরিক ক্ষেত্রে আদান-প্রদান সহ ভারত ও চীনের মধ্যে বিভিন্ন স্তরে উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়টির প্রশংসা করেন। আগামী ১জুলাই থেকে সারা দেশে চালু হতে চলেছে পণ্য ও পরিষেবা কর, অর্থাৎ জিএসটি। তথ্যের সুরক্ষা সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা হয় এদিনের বৈঠকে। জিএসটিসম্পর্কিত প্রশ্নের সদুত্তর লাভের জন্য @askGst_GOI – এই ট্যুইটার পরিষেবাটিও চালু করা হয়েছে। তাছাড়া চালু হয়েছে 1800-1200-232 টোল ফ্রি এই হেল্পলাইনটিও। প্রধানমন্ত্রী এদিন পর্যালোচনা বৈঠকে বলেন যেআগামী ১ জুলাই থেকে জিএসটি চালু হলে বিভিন্ন রাজনৈতিক দল, শিল্প ও বাণিজ্য সংগঠনএবং সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সম্মিলিত প্রচেষ্টা সফল হবে। মালদ্বীপেরবিদেশ মন্ত্রী তথা ঐ দেশের রাষ্ট্রপতির বিশেষ দূত ডঃ মহম্মদ আসিম বৃহস্পতিবারএখানে এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ‘ভারতইপ্রথম’ এই নীতি অনুসরণ করে ভারতের সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক বজায়রাখতে যে মালদ্বীপ অঙ্গীকারবদ্ধ, একথা শ্রী মোদীর কাছে পুনর্ব্যক্ত করেন ডঃ আসিম। প্রধানমন্ত্রীএই উক্তির সমর্থনে বলেন যে ভারত সর্বদাই মালদ্বীপের এক বিশ্বস্ত ও ঘনিষ্ঠপ্রতিবেশী হিসেবে তার নিরাপত্তা ও অগ্রগতিকে সাহায্য করে যাবে। মন্ত্রিসভার এই অনুমোদনের ফলে বিকল্প ব্যবস্থা না হওয়া পর্যন্ত শ্রীলঙ্কা আপাতত এ ব্যাপারে কিছুটা নিশ্চিন্ত হল। এছাড়াও, ৭০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিশেষ মুদ্রা বিনিময়ের সুযোগও দেওয়া হল শ্রীলঙ্কাকে তিন মাসের জন্য। মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের ফলে শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা বিশেষভাবে জোরদার হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। আজ হিমাচলপ্রদেশের বিলাসপুর সফরেযানপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি সেখানেঅল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (এইম্‌স)-এর শিলান্যাস করেন। উনায়ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ইনফরমেশন টেকনলজি (আইআইআইটি)-র শিলান্যাস করেন শ্রীনরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের রত্ন ও অলঙ্কার শিল্পকে দেশের বাজার ছাড়িয়ে বাইরে তাকাতে এবং বিশ্ব জুড়ে নিজেদের অস্তিত্ব জানান দেওয়ার আহ্বান জানালেন। অল ইন্ডিয়া জেমস্‌ অ্যান্ড জুয়েলারিট্রেড ফেডারেশনের উদ্যোগে প্রধানমন্ত্রীর সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়েশনিবার ২৩ জুলাই প্রধানমন্ত্রী এই উদ্দেশ্যসাধনের জন্য উদ্ভাবন ও দক্ষতা বিকাশেরআহ্বান জানান। হাতে তৈরি অলঙ্কারের জন্য বিশ্ব জুড়ে চাহিদা ক্রমশ বাড়ছে বলে শ্রীমোদী উল্লেখ করেন। উৎপাদন শুল্ক সংক্রান্ত সাম্প্রতিক বিষয়গুলির অবতারণা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইসব বিষয়গুলি রত্ন ও অলঙ্কার শিল্পকে সরকারের কাজকর্ম সম্পর্কে আরও ভালোভাবে অবহিত হওয়ার সুযোগ করে দিয়েছে এবং সেই সঙ্গেই সরকারকেও সংশ্লিষ্ট শিল্পের সূক্ষাতিসূক্ষ বিষয়গুলি সম্পর্কে জানারও সুযোগ দিয়েছে। উভয়েই একে অপরের ওপর জয়ী হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (শনিবার) ওড়িশার বারিপদা সফর করেন। শ্রী মোদী সেখানে রসিকা রায় মন্দিরে সংরক্ষণ ও উন্নয়নমূলক কাজকর্মের সূচনা উপলক্ষে ডিজিটাল ফলকের আবরণ উন্মোচন এবং হরিপুরগড়ের প্রাচীন দূর্গে খননকার্যের সূচনা করেন। শ্রী মোদী জাতীয় স্তরে গুরুত্বপূর্ণ তিনটি মহাসড়ক প্রকল্পেরও শিলান্যাস করেন। রাষ্ট্রায়ত্ত্ব ইন্ডিয়ান অয়েল কর্পোরেশনের পারাদ্বীপ-হলদিয়া-দূর্গাপুর রান্নার গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পের বালাসোর-হলদিয়া-দূর্গাপুর শাখা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন তিনি। বালাসোরে প্রধানমন্ত্রী একটি মাল্টিমোডাল লজিস্টিক পার্ক এবং ৬টি পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রের সূচনা করেন। টাটানগর থেকে বাদামপাহাড় পর্যন্ত দ্বিতীয় যাত্রীবাহি ট্রেনের যাত্রার সূচনাও করেন তিনি। এক জনসভায় ভাষণে শ্রী মোদী বলেন, আজ যেসমস্ত প্রকল্পের সূচনা এবং শিলান্যাস হয়েছে, সেগুলি রূপায়ণে ৪ হাজার কোটি টাকার বেশি খরচ ধরা হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, বালাসোর-হলদিয়া-দূর্গাপুর রান্নার গ্যাসের পাইপলাইনটি ওড়িশা ও পশ্চিমবঙ্গের নানা জায়গায় রান্নার গ্যাস সরবরাহে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে, সেইসঙ্গে পরিবহন খাতে খরচ ও সময় উভয়ই স্বাশ্রয় হবে। তিনি জানান, দেশের অন্যান্য রাজ্যের পাশাপাশি ওড়িশাতেও সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্হার বিকাশে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। রেল যোগাযোগ ব্যবস্হা সম্প্রসারিত হলে সাধারণ মানুষের যাতায়াতের পাশাপাশি শিল্প সংস্হাগুলির কাছে আরও দ্রুত খনিজ সম্পদ পৌঁছে দেওয়া যাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিকাঠামো ব্যবস্হার সম্প্রসারণের ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের পাশাপাশি দেশের মাঝারি মানের শিল্পোদ্যোগগুলিও লাভবান হবে। আধুনিক সড়ক ব্যবস্হা, পরিস্কার পরিচ্ছন্ন ট্রেন পরিষেবা এবং ব্যয় স্বাশ্রয়ী বিমান পরিষেবার ফলে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের জীবন-যাপনের মনোন্নয়ন ঘটছে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, সাধারণ মানুষ পাসপোর্ট পাওয়ার ক্ষেত্রে যেসমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে, তা দূর করতে কেন্দ্রীয় সরকার বিগত সাড়ে চার বছরে একাধিক উদ্যোগ গ্রহণ করেছে। মানুষের এই সমস্যা দুর করতে ৬টি পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রের আজ সূচনা করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। সহজে জীবন-যাপনের মনোন্নয়ন ঘটানোর লক্ষেই এই পদক্ষেপ। উল্লেখ্য,ভারতে বিভিন্ন বন্দরের নামকরণ করা হয় সাধারণত সংশ্লিষ্ট শহর বা অঞ্চলেরনামানুসারে। তবে, বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে বিবেচনা ও চিন্তাভাবনার পর অতীতের মহাননেতাদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাতে কোন কোন বন্দরের নাম তাঁদের নামে নামাঙ্কিত করারসিদ্ধান্ত গ্রহণ করে থাকে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রীর শ্রী নরেন্দ্র মোদী আকাশবাণী মৈত্রী চ্যানেল চালু হওয়ায় অল ইন্ডিয়া রেডিও (আকাশবাণী) – কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “ রাষ্ট্রপতি আকাশবাণী মৈত্রী চ্যানেলের উদ্বোধন করায়আকাশবাণী (এআইআর) – কে অভিনন্দন। এই চ্যানেলটিভারত ও বাংলাদেশে শোনা যাবে। জিএসটি-কে সহযোগিতা মূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়তার সেরা উদাহরণ বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী একগুচ্ছ টুইটে বলেছেন যে এই সংস্কারটি মেক-ইন-ইন্ডিয়ার বিকাশ এবং রপ্তানির সহায়তার পক্ষে বিশেষ উপকারী আর এভাবেই রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্হান বাড়াতেও ভূমিকা নেবে। ‘ রাজ্যসভায় জিএসটি বিল পাশ হওয়ার ঐতিহাসিক দিন উপলক্ষে আমিসবদলের নেতা ও সদস্যদের ধন্যবাদ জানাই। ভারতকে একুশ শতকের উপযোগী এক অপ্রত্যক্ষ কর ব্যবস্হা উপহার দিতে তাঁদের যুগান্তকারী সিদ্ধান্তের জন্য আমাদের সাংসদদের অবশ্যই অভিনন্দন জানানো উচিত। আমরা সব দল ওরাজ্যের সঙ্গে একযোগে এমন এক ব্যবস্হা গড়ে তুলতে কাজ করে যাব যেটা সমস্ত ভারতীয়ের পক্ষে কল্যাণকর হবে এবং এক উজ্জীবিত ও ঐক্যবদ্ধ জাতীয় বাজার গড়ে তোলায় সহায়ক হবে। এই সংস্কারটিমেক-ইন-ইন্ডিয়াকে উৎসাহ দেবে, রপ্তানিতে সাহায্য করবে আর এইভাবেই রাজস্ব বৃদ্ধির পাশাপাশি কর্মসংস্হান বাড়াবে। জিএসটি যেসহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়তা বা কো-অপারেটিভ ফেডারেলিজম-এর সেরা নজির আমি সেকথাও বলতে চাই। ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস (আইপিএস)-এর ২০১৭ ব্যাচের প্রায় ১০০ জন শিক্ষানবিশ সোমবার (৮ অক্টোবর) নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শিক্ষানবিশ পুলিশ আধিকারিকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময়ে প্রধানমন্ত্রী আন্তরিকতা এবং কুশলতার সঙ্গে কর্মসম্পাদন করার এবং তাঁদের উপর ন্যস্ত দায়িত্ব ও ভূমিকা যথাযথ পালনের ওপর জোর দেন। কর্তব্য পালনের সময় ৩৩ হাজারেরও বেশি পুলিশ কর্মী, যাঁরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের কথাও শিক্ষানবিশ পুলিশ আধিকারিকদের স্মরণ করিয়ে দেন। “স্কিপ্রতিযোগিতায় বিশ্ব পদক জয়ী অঞ্চল ঠাকুরকে সাবাস জানাই। এফআইএস আন্তর্জাতিক স্কিপ্রতিযোগিতায় আপনার এই ঐতিহাসিক সাফল্যে সমগ্র জাতি আজ উল্লসিত। বর্তমানে দেশে মাথাপিছু ইস্পাতব্যবহারের মাত্রা হল ৬০ কিলোগ্রাম। বিশেষত,লোহা ও ইস্পাত ক্ষেত্রে জাতীয় দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পগুলিতে গবেষণা ওউন্নয়নের বিষয়টি বিশেষ অগ্রাধিকার লাভ করবে। গ্রহীতাদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন বিধবা মহিলা। এই উপলক্ষে, শিবিরে প্রদত্ত এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী তাঁর দায়িত্বভার গ্রহণের পূর্বের কথা স্মরণ করে বলেন, তিনি কথা দিয়েছিলেন যে তাঁর সরকার দরিদ্র ও অবহেলিতদের সেবায় বিশেষভাবে নজর দেবে। এই কারণে ইতিমধ্যেই কেন্দ্রীয় সরকার এ ব্যাপারে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। পূর্ববর্তী সরকারগুলির তুলনায় এই সংখ্যা যে অনেক বেশি সে কথারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সহায়ক যন্ত্রপাতি ও সাজসরঞ্জাম বিতরণের ক্ষেত্রে মধ্যস্বত্বভোগী বা দালালদের কোনও স্থান নেই। অনুষ্ঠানে যোগ দিতে আসা বেশ কিছু মানুষ বাস দুর্ঘটনার ফলে আহত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী দুঃখ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আহতদের চিকিৎসা ও সেবায় যাতে কোনও ত্রুটি না থাকে সেজন্য মন্ত্রী ও আধিকারিকরা হাসপাতালে ছুটে গেছেন। তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস কমিশন (ও.এন.জি.সি.) এর ফলে, আগ্রহী খনন সংস্থাগুলি এখন তাদের নিজস্ব দরপত্র পেশ করতে পারবে। প্রান্তিক তৈল ক্ষেত্র হিসেবে বিবেচিত হওয়ায় এই বিষয়টিতে এর আগে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়নি। কিন্তু, সংশ্লিষ্ট নীতিতে কিছু পরিবর্তন আনার ফলে এই তৈল ক্ষেত্রগুলিতে এখন উৎপাদনও শুরু করা যাবে। ‘ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপ কিন্তু সর্বাধিক প্রশাসনিক ব্যবস্থা’ – এই নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রস্তাবিত চুক্তি বা বরাতের আঙ্গিকে কিছু উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনও আনা হয়েছে। এর আগে বরাতের বিষয়টি মূলত লভ্যাংশ ভাগ করে নেওয়ার ভিত্তিতে স্থির করা হতো। কিন্তু, নতুন ব্যবস্থায় অংশগ্রহণকারী বেসরকারি সংস্থাগুলির লাভ-লোকসানের বিষয়টি বিবেচনা না করে তেল, গ্যাস ইত্যাদি বিপণনের মাধ্যমে অর্জিত মোট রাজস্বের অংশের বিষয়টি সরকার বিবেচনা করবে। দ্বিতীয় পরিবর্তনটি হল, যে সমস্ত সংস্থাকে বরাত দেওয়া হবে তাদের ঐ তৈল খনিতে মজুত সমস্ত হাইড্রোকার্বনের উন্নয়নের দায়িত্ব দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ইজরায়েল সফর করছেন এ মাসের ৪-৬ জুলাই পর্যন্ত। দ্বাদশ জি-২০শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য তিনি জার্মানির হাম্‌বার্গ সফর করবেন ৬-৮ জুলাই। প্রধানমন্ত্রীতাঁর এই সফরসূচি প্রসঙ্গে ফেসবুকে কয়েকটি বার্তায় বলেছেন – এই বছরটিতে ভারত ওইজরায়েল পালন করছে তাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের ২৫ বছর পূর্তির উপলক্ষটিকে। সন্ত্রাসবাদের মতো সাধারণ চ্যালেঞ্জগুলিসম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনার সুযোগ ঘটবে আমাদের। সফরকালে আমারবিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে আমি সুযোগ খুঁজে নেব ইজরায়েলি সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রেরমানুষদের সঙ্গে আলাপচারিতার লক্ষ্যে। এ বছরের আলোচনার থিম বা বিষয়বস্তু হ’ল ‘পরস্পর সংযুক্তএক বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে’। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় ক্যাবিনেট বৃহস্পতিবার নিম্নলিখিত অনুমোদন দিয়েছে : ১) কাউন্সিল অফ ইউরোপ কনভেনশন-এর কাছে এক চিঠিতে বন্দী প্রত্যার্পণ বিষয়ে কাউন্সিল অফ ইউরোপ-এ ভারতের সংযুক্তির জন্য আনুষ্ঠানিক অনুরোধ জানানো হবে; এবং মার্কিন কংগ্রেসের২৬ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল আজ এখানে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদীর সঙ্গে। প্রতিনিধিদলেরসঙ্গে সাক্ষাৎকারকালে শ্রী মোদী মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে তাঁরইতিবাচক কথোপকথনের স্মৃতিচারণ করে বলেন, গত আড়াই বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রেরসঙ্গে ভারতের যে শক্তিশালী সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তাকে আরও নিবিড় করতে তাঁরাপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রসঙ্গত, ভারত-মার্কিন অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে মার্কিনকংগ্রেসের সমর্থনের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। মার্কিন অর্থনীতি ওসমাজ ব্যবস্থায় ভারতীয়দের মেধা ও দক্ষতা যে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেসেকথার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঐ দেশকে নানা দিক থেকে সমৃদ্ধ করে তুলতেভারতীয় প্রতিভার অবদান অনস্বীকার্য। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশ জুড়ে বিভিন্ন উৎসবের জন্য দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এই উপলক্ষে প্রত্যেককে শুভেচ্ছা। প্রত্যেকের জীবন সুখ ও সমৃদ্ধিতে ভরে উঠুক।” এই পবিত্র দিনটি যেন আপনাদের সুস্বাস্থ্য এবং প্রত্যেকের সাফল্য বয়ে আনে। আমরা আমাদের সেই কঠোর পরিশ্রমী কৃষকদের অভিবাদন জানাই যাঁরা আমাদের দেশকে খাদ্য যোগান।” প্রাণবন্ত ওড়িয়া সমাজকে জানাই শুভ নববর্ষ! “এক নতুন বছর এবং নতুন প্রত্যাশা ও নতুন আশা! এই মহা বিষুব সংক্রান্তি যেন আপনাদের সকল ইচ্ছা পূরণ করে। সকলের সুখ ও শান্তির জন্য প্রার্থনা করি।” আগামী বছরটি যেন আপনাদের সকল প্রত্যাশা পূরণ করে। 1. উগান্ডা সাধারণতন্ত্রের মাননীয় প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি মুসেভেনির আমন্ত্রণে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২৪ ও ২৫শে জুলাই সরকারি সফর করেন। ভারত সরকারের পদস্থ আধিকারিকদের এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল এবং বিরাট সংখ্যক বাণিজ্য প্রতিনিধিরা ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর সফরসঙ্গী। গত ২১ বছরে এটাই ছিল কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম উগান্ডা সফর। 2. প্রধানমন্ত্রী সেখানে পৌঁছনোর পর তাঁকে আন্তরিকভাবে স্বাগত ও অভ্যর্থনা জানানো হয়। প্রেসিডেন্ট মুসেভেনির সঙ্গে ২৪ জুলাই এনটিবি-র স্টেট হাউজে এক দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় মিলিত হন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সফররত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীর সম্মানে এক রাষ্ট্রীয় ভোজসভারও আয়োজন করেন প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি। 3. উগান্ডা সংসদে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর ভাষণ ভারত সহ আফ্রিকার বিভিন্ন দেশগুলিতে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়। এই প্রথম একজন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী উগান্ডার সংসদে ভাষণ দিলেন। উগান্ডার বেসরকারি ক্ষেত্রের এক বিশেষ প্রতিষ্ঠান পিএসএফইউ এবং ভারতীয় শিল্প সংস্থাগুলির কনফেডারেশন সিআইআই-এর উদ্যোগে আয়োজিত এক বাণিজ্য সম্মেলনেও বক্তব্য রাখেন দুই রাষ্ট্রপ্রধান। এই সফর উপলক্ষে উগান্ডায় বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের এক বিশাল সমাবেশেও ভাষণ দেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। 4. দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে আলোচনাকালে ভারত ও উগান্ডার মধ্যে পরম্পরাগতভাবে চলে আসা উষ্ণ ও নিবিড় সম্পর্কের বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি। উগান্ডার জাতীয় বিকাশ ও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে ভারতীয় সম্প্রদায়ের প্রায় ৩০ হাজার সদস্যের বিশেষ অবদানের প্রশংসা করেন প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি। সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মের পিছনে কোন যুক্তিসঙ্গত কারণ থাকতে পারে না বলে দৃঢ়তার সঙ্গে ঘোষণা করেন শ্রী মোদী এবং মিঃ মুসেভেনি। 7. দুই নেতাই বিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে সন্ত্রাসবাদী, সন্ত্রাসবাদী সংগঠন, সেগুলির নেটওয়ার্ক এবং সন্ত্রাসকে যারা কোন না কোনভাবে সাহায্য, সমর্থন ও মদত যুগিয়ে যাচ্ছে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ। 15. উগান্ডায় অবস্থানকালে তাঁকে এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে উষ্ণ আতিথ্য ও আতিথেয়তা দানের জন্য প্রেসিডেন্ট ইওয়েরি মুসেভেনিকে ধন্যবাদ জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি উগান্ডার রাষ্ট্রপ্রধানকে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানালে মিঃ মুসেভেনি তা সানন্দেই গ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকেআজ অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর অন্তর্গত শ্রেণী-বিভাগের বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্যগঠিত কমিশনের মেয়াদ আরও ১২ সপ্তাহ সম্প্রসারণের, অর্থাৎ ২০১৮-র ২ এপ্রিল পর্যন্ত বাড়িয়েদেওয়ার প্রস্তাব মঞ্জুর করেছে। এই মেয়াদ সম্প্রসারণের ফলে কমিশনের পক্ষে অন্যান্য অনগ্রসরশ্রেণীর অন্তর্গত শ্রেণী-বিভাগের বিষয়টিতে স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নানা পক্ষের সঙ্গেআলোচনার পর পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন পেশ করা সম্ভব হবে। কমিশন, গত ৩ বছরে বিভিন্ন উচ্চশিক্ষা সংক্রান্ত পাঠক্রমেঅনগ্রসর শ্রেণীর ভর্তির সংক্রান্ত তথ্যাদি ১৯৭টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকেচেয়েছে এবং একইভাবে সরকারি দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিএবং কেন্দ্রীয় সরকারি রাষ্ট্রায়ত্ত উদ্যোগগুলিতে অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীভুক্তদেরচাকরির ক্ষেত্রে গত ৩ বছরের তথ্যাদিও চেয়ে পাঠিয়েছে। রানী গাইদিনলিউ’র জন্মশতবার্ষিকী উদযাপনের আনুষ্ঠানিক সূচনা উপলক্ষে এক স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, রানী গাইদিনলিউ – এর মতো ব্যক্তিত্বকে যথাযথভাবে মনে রাখা হয়নি, এটা জাতির দুর্ভাগ্য। স্বাধীনতা সংগ্রামে রানীর বিশেষ অবদানের কথা প্রধানমন্ত্রী অনুষ্ঠানে স্মরণ করিয়ে দেন। রানী গাইদিনলিউ’কে “রানী মা” বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রানী গাইদিনলিউ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে নাগাদের সংগ্রামকে ভারতের ঐক্য ও সংহতি রক্ষার সংগ্রাম বলেই মনে করতেন। উত্তর-পূর্ব ভারতে মহাত্মা গান্ধীর বাণী প্রচার করার কৃতিত্বও রানী মা’র বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। দুঃখের বিষয় স্বাধীনতার বহু বছর পরেও তিনি নিজের গ্রামে প্রবেশ করতে পারেননি। প্রসঙ্গত, উত্তর-পূর্ব ভারতের বিকাশ ও উন্নয়নে তাঁর সরকারের বিশেষ প্রচেষ্টা ও উদ্যোগগুলির কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি দৃঢ়তার সঙ্গে বলেন, দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অগ্রগতির ওপরই সমগ্র জাতির উন্নয়ন নির্ভর করছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পাদিত সীমান্ত চুক্তির পরিপ্রেক্ষিতে সারা দেশের সঙ্গে এই অঞ্চলের যোগাযোগ আরও উন্নত হয়ে উঠবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা ব্যক্ত করেন। সম্প্রতি স্বাক্ষরিত নাগা শান্তি চুক্তির কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। রূপরেখা সংশোধন সম্পর্কিত যে বিষয়গুলি মন্ত্রিসভায় অনুমোদিত হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে – • প্রধানমন্ত্রীর অনুমোদনক্রমে অর্থমন্ত্রী এবং বিদেশ মন্ত্রী সরকারের পক্ষে যে কোনও দেশ থেকে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সম্পর্কিত সহায়তা গ্রহণ করতে পারেন। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্ত রাজ্য, জাপান, জার্মানি, ফ্রান্স, ইতালি, কানাডা, রাশিয়া, ইউরোপীয় কমিশন এবং ইউরোপীয়ান ইউনিয়নভুক্ত দেশগুলির কাছ থেকেও তারা এই সহায়তা স্বীকার করতে পারবেন। • বিভিন্ন মূলধন প্রকল্প সহ অন্যান্য বিশেষ বিশেষ প্রকল্পর ক্ষেত্রেও তারা বিশেষ ঋণ সহায়তা গ্রহণ করতে পারবেন। • দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সঙ্গে যুক্ত এমন দেশগুলির কাছ থেকে বছরে কমপক্ষে ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো উন্নয়ন সহযোগিতা তারা স্বীকার করতে পারবেন। এর মধ্যে ন্যূনতম ৫০ শতাংশ হতে হবে সাধারণ ঋণ সহায়তা, যা বিশেষ ঋণ হিসেবে বিবেচিত হবে না। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি আগামীকাল জম্মু ও কাশ্মীর সফরে যাবেন| প্রধানমন্ত্রী শ্রীনগরের শের-ই-কাশ্মীর ক্রিকেট স্টেডিয়ামে এক জন সমাবেশে ভাষণ দেবেন| নয়া দিল্লি: ১৫ ডিসেম্বর: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা শুক্রবার কৃষি ও মৎস্যচাষের ক্ষেত্রে ভারত ওকলম্বিয়ার মধ্যে সমঝোতা স্মারক (মউ) স্বাক্ষরে অনুমোদন দিল| এই মউ কৃষি ও মৎস্যচাষের নিম্নলিখিত ক্ষেত্রেসহযোগিতা প্রদান করবে: শুকরের প্রক্রিয়াকরণ ও মূল্যযুক্তকরণ| পর্যটন ক্ষেত্রে ভারত ও উজবেকিস্হানের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্মতি জানিয়েছে। এর ফলস্বরূপ দেশে অর্থনৈতিক বিকাশ এবং কর্মসংস্হনও হবে। ভারত-উজবেকিস্হান সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হলে পর্যটন ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী সহযোগিতা সম্ভব হবে, যার ফলে এই ক্ষেত্রে দু’দেশে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষ উপকৃত হবে। *** নয়া দিল্লি:১৭ মে: প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ ওবহুজাতিক সংগঠিত অপরাধ মোকাবিলায় সহযোগিতার জন্য ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সমঝোতাস্মারকে(মউ) স্বাক্ষর পরবর্তী অনুমোদন দিল| প্রস্তাবিত এই মউ তথ্য, বিশেষজ্ঞ, অভিজ্ঞতাআদান-প্রদান এবং দক্ষতা অর্জনের মধ্য দিয়ে শান্তি ও স্থায়িত্ব তৈরিতে ভারত ওঅস্ট্রেলিয়ার মধ্যেকার সম্পর্ককে শক্তিশালী করবে| চিহ্নিত ক্ষেত্রগুলোতে সহযোগিতা ও প্রয়োজনীয় আলোচনারসমস্ত বিষয় নিয়ে একটি কার্যকর পরিকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যেই এই মউ| জাতীয় সংবাদ মাধ্যম দিবসে প্রচার মাধ্যমের সদস্যদের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বিশেষত, সংবাদপ্রতিনিধি এবং আলোকচিত্রীরা যেভাবে ঘটনাস্থলে উপস্থিত থেকে বিভিন্ন সংবাদ সংগ্রহেরপর তা জাতীয় তথা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে প্রচারের ব্যবস্থা করেন, তা নিঃসন্দেহেপ্রশংসনীয়। বাণীহারার কন্ঠে প্রকাশের উপযোগী ভাষার যোগান দেওয়ার ক্ষেত্রে সংবাদমাধ্যমগুলির ভূমিকা সাধুবাদের দাবী রাখে। বর্তমান দিনে এবং যুগে সোশ্যাল মিডিয়ার উত্থান আমরা লক্ষ্য করছি, এমনকিমোবাইল ফোনের মাধ্যমেও বিভিন্ন তথ্য ও সংবাদ সকলের নজরে নিয়ে আসা হচ্ছে। জাতীয় নৌ-দিবসে জাতিরসমৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের নৌ-শক্তিকে সুসংহত করে তুলতে আমরা আমাদের অঙ্গীকারেরইপুনরুচ্চারণ করি। দেশেরনৌ-ক্ষেত্রকে উজ্জ্বল ও শক্তিশালী করে তুলতে যে প্রচেষ্টার সঙ্গে আমরা যুক্তরয়েছি, তাতে অনুপ্রেরণা যুগিয়ে গেছেন ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর। জলশক্তি, জলপথ,জলসেচ, বন্দর এবং দেশের সুবিস্তৃত নদী-নালাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে গেছেনবাবাসাহেব। লোকসভায় রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ জবাবী ভাষণ দেন। একাধিক ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন : “একটি সরকারকে ভারতের মানুষের স্বার্থে কাজ করতে হবে, জনগণের আশা-আকাঙ্ক্ষাগুলির প্রতি সরকারকে সংবেদনশীল হতে হবে। এখানে দুর্নীতির কোন স্থান নেই। সংসদে তর্ক-বিতর্কে বহু সদস্য অংশ নিয়েছেন। আমি তাঁদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। ২০১৯-এর সংসদীয় নির্বাচনে প্রথমবার যাঁরা ভোট দিতে চলেছেন, আমি তাঁদের সকলকে অভিনন্দন জানাই। আস্থা ও প্রত্যাশার ওপর নির্ভর করে আমাদের দেশ এগিয়ে যাবে। চ্যালেঞ্জ থেকে যারা দূরে পালায়, আমরা তাদের মতো নই। আমরা চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হই এবং মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূর্ণ করার চেষ্টা করি। বিগত চার বছরে ভারতে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি ঘটেছে। প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই – বিনিয়োগ থেকে ইস্পাত, স্টার্ট-আপ, দুগ্ধ ও কৃষি এমনকি বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রেও ভারতের অগ্রগতি উল্লেখযোগ্য। মোদীকে অবজ্ঞা করে বিরোধীরা দেশকে অবজ্ঞা করেছেন। আর, এই কারণেই তাদের নেতা-নেত্রীরা লন্ডনে যান এবং সেখানে গিয়ে সাংবাদিক সম্মেলন করে ভারতের খারাপ দিকগুলি তুলে ধরেন। আপনারাই জানেন, তাদের বিরুদ্ধে আমার কি অপরাধ? দরিদ্র পরিবারে জন্মানো এক ব্যক্তি, এদের সর্বব্যাপী একাধিপত্ত্ব স্থাপনের ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন। বিগত ৫৫ বছরে দেশে শৌচালয় ও অনাময়তার পরিধি ছিল ৩৮ শতাংশ, আমাদের ৫৫ মাসে যা বেড়ে হয়েছে প্রায় ৯৮ শতাংশ। সমগ্র ভারতবাসী দেখেছেন, পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা নিয়ে একটি সরকার কি কাজ করতে পারে। এরা এনডিএ-র কাজও দেখেছেন। তারা ‘মহামিলাবট’ বা ভেজাল সরকার চান না, যারা কলকাতায় সমবেত হয়েছিলেন। ২০১০-এর কমনওয়েল্‌থ গেমসের সময়, আমাদের খেলোয়াড়রা পদক জয়ের জন্য কঠোর প্রচেষ্টা চালিয়েছিলেন। কিন্তু কংগ্রেসের কাছে কমনওয়েল্‌থ গেমস ছিল দলের কয়েকজনের কাছে ব্যক্তিগত সম্পদ বাড়ানোর এক সুযোগ। ইউপিএ সরকারের ফোন ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা তাদের নেতা-নেত্রীদের বন্ধুদের বিশেষ স্বার্থবাহী হয়েছিল। এই পক্ষপাতিত্বের দরুণ আমাদের ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থায় বহু সমস্যা দেখা দেয়। সংসদের এই কক্ষে আমি বলতে চাই যে, ভারতীয় জাতীয় কংগ্রেস কখনই চায়নি যে আমাদের সেনাবাহিনী শক্তিশালী হোক। আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থাও জোরদার হোক, এটাও তারা চায়নি। যে সংস্থাগুলির হয়ে তারা নিলামে অংশ নিচ্ছে সে ব্যাপারে তারা অত্যন্ত নিন্দাজনক কাজ করছে। ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকর সর্বদাই তাঁর সময়ের আগে ছিলেন। তিনি বলেছিলেন যে, কংগ্রেসে যোগদানের অর্থ আত্মহত্যার সামিল। হাজার হাজার সংগঠন বিদেশ থেকে টাকা পেয়েছে। টাকা পাঠানোর এই প্রক্রিয়ায় আমরা যখন স্বচ্ছতার দাবি জানিয়েছি, তখন এই প্রতিষ্ঠানগুলি বন্ধ হয়ে গেছে। কোনরকম দায়বদ্ধতা ছাড়াই কেন এই বিপুল অর্থ তাদের জন্য অনুমোদন করা হয়েছিল? মূল্যবৃদ্ধি ও কংগ্রেস পক্ষান্তরে যেন একটি দল হয়ে উঠেছিল। কংগ্রেস যখনই ক্ষমতায় এসেছে, তখনই জিনিসপত্রের দাম বেড়েছে। এনডিএ সরকার মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে রাখতে কাজ করেছে। ইউপিএ জমানায় এলইডি বাল্বের দাম অত্যন্ত বেশি হওয়ার পেছনে কি কারণ ছিল। আমার সরকার দেশবাসীর সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণের লক্ষ্যে কাজ করেছে। স্টেন্ট, হাঁটু প্রতিস্থাপন ও ওষুধপত্রের দাম কমছে। এর ফলে, দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর মানুষের উপকার হচ্ছে। ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইন উভয়েরই বন্ধু হয়ে উঠবে ভারত। সৌদি আরব ও ইরানেরও বন্ধু হয়ে উঠবে। আমাদের বৈদেশিক নীতির ফলে বিশ্ব মঞ্চে ভারতের অবস্থান আরও মজবুত হচ্ছে। আমরা দেশবাসীর প্রত্যাশাগুলি সর্বদাই পূরণ করে চলব। ঔদ্ধত্যের কারণে তারা আজ ৪০০ থেকে ৪৪-এ নেমে এসেছে। দেশের প্রতি অঙ্গীকার এবং আমাদের কঠোর পরিশ্রমের দরুণ আমরা ২ থেকে ২৮২-তে পৌঁছেছি। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে, যারা দেশকে লুঠ করেছেন তারা সর্বদাই নরেন্দ্র মোদীকে ভয় করে চলবেন। সম্প্রতি সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণ কবলিত পাঠানকোট বিমান ঘাঁটি পরিদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই ধরনের একটি গুরুতর সন্ত্রাসবাদী হামলার মোকাবিলা ও প্রতিরোধে প্রতিরক্ষা বাহিনীর সেনা ও জওয়ান-কর্মীদের বিশেষ তৎপরতার কথা সবিস্তারে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন বাহিনীর পদস্থ আধিকারিকরা। বিমান ঘাঁটির যে যে এলাকায় সন্ত্রাসবাদীরা আক্রমণ চালিয়েছিল সেগুলি ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। আকাশপথেও সীমান্ত অঞ্চলটি পরিদর্শন করেন তিনি। নয়ডায় স্যামসাং ইন্ডিয়া ইলেক্ট্রনিক্স প্রাইভেট লিমিটেডের এক বড় ধরণের মোবাইল উৎপাদন কারখানার আজ উদ্বোধন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং কোরিয়া সাধারণতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট মিঃ মুন জে-ইন। অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী বলেন, ভারতকে বিশ্বের একটি বিশেষ উৎপাদন গন্তব্য রূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যে এটি হল এক বিশেষ উপলক্ষ। প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা বিনিময়ে এই মোবাইল উৎপাদন প্রচেষ্টা ভারতের সঙ্গে স্যামসাং-এর বাণিজ্যিক সম্পর্ককে শুধুমাত্র আরও শক্তিশালী করে তুলবে না, সেইসঙ্গে দু’দেশের মৈত্রী সম্পর্কেও এক নতুন মাত্রা এনে দেবে। স্মার্ট ফোন, ব্রডব্যান্ড এবং ডেটা সংযোগের প্রসারের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে এ সমস্ত কিছুই ভারতে ডিজিটাল বিপ্লবের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। এই প্রসঙ্গে সরকারি বৈদ্যুতিন বিপণন মঞ্চ (জিইএম), ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের প্রসার এবং ‘ভিম’ অ্যাপ ও ‘রুপে’ কার্ড চালু করার কথা উল্লেখ করেন তিনি। নতুন ভারতের স্বচ্ছ বাণিজ্য সংস্কৃতির সুযোগ গ্রহণে আগ্রহী দেশগুলির কাছে ভারত উদার আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছে বলে ঘোষণা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ভারতের ক্রমবিকাশশীল অর্থনীতি এবং নতুনভাবে গড়ে ওঠা মধ্যবিত্ত শ্রেণী বিনিয়োগ সম্ভাবনাকে আরও বেশি মাত্রায় উজ্জ্বল করে তুলেছে। এর ফলে, লক্ষ লক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয়েছে। নতুন মোবাইল উৎপাদন কারখানাটি স্থাপিত হওয়ার ফলে কোরিয়ান প্রযুক্তির সঙ্গে ভারতীয় উৎপাদন তথা সফ্‌টওয়্যার প্রযুক্তির সমন্বয় এ দেশে বিশ্বমানের পণ্য উৎপাদন সম্ভব করে তুলবে বলে প্রধানমন্ত্রী মনে করেন। সংসদের এই বিশেষ কক্ষে বক্তব্য পেশের আমন্ত্রণ পেয়ে আমি নিজেকে বিশেষভাবে সম্মানিত বোধ করছি। অন্যান্য সংসদেও এই ধরণের সুযোগ আমি লাভ করেছিলাম। শুধু তাই নয়, ভারতের ১২৫ কোটি জনসাধারণও এই ঘটনায় সম্মানিত। এই সংসদ এবং উগান্ডার জনসাধারণের উদ্দেশে তাঁদের শুভেচ্ছা, অভিনন্দন ও মৈত্রীর বার্তা আমি এখানে বহন করে নিয়ে এসেছি। আমি যখনই উগান্ডা সফরে আসি ‘আফ্রিকার এই মুক্তো’ আমাকে মুগ্ধ করে। অনুপম সৌন্দর্য, বিরাট সম্পদ এবং সমৃদ্ধ ঐতিহ্যের দেশ হল উগান্ডা। এর হ্রদ ও নদ-নদী এক বিশাল অঞ্চলের সভ্যতাকে লালন করে এসেছে। এক বৃহত্তম গণতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আরেকটি সার্বভৌম রাষ্ট্রের নির্বাচিত সাংসদদের কাছে বক্তব্য পেশের সময় যে ঐতিহাসিক পথ অনুসরণ করে আজ আমি এখানে এসে উপস্থিত হয়েছি, সে সম্পর্কে আমি পূর্ণ মাত্রায় সচেতন। আমাদের সুপ্রাচীন নৌ সম্পর্ক, ঔপনিবেশিক শাসনের সেই অন্ধকারময় অধ্যায়, মিলিত স্বাধীনতা সংগ্রাম, পরস্পর বিভক্ত বিশ্ব জগতে স্বাধীন দেশ হিসাবে আমাদের অনিশ্চয়তার পথে যাত্রা, নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার সূচনা এবং আমাদের তরুণ সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষার মধ্যে মিল ও ঐক্য সেই ইতিহাসকে গড়ে তুলেছে। এ সমস্ত কিছুই আমাদের পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করেছে। উগান্ডা এবং ভারতকে পরস্পরের কাছে নিয়ে আসার জন্য যে সমস্ত বিষয়ের বিশেষ অবদান রয়েছে তার মধ্যে অন্যতম হল আমাদের দু’দেশের জনসাধারণ। এক শতাব্দীরও বেশি সময়কাল পূর্বে সাহসী শ্রমিকরা ভারত মহাসাগরের উপকূলকে যুক্ত করেছিল রেলপথের মাধ্যমে। আপনাদের এই উজ্জ্বল উপস্থিতি আমাদের দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে মূল্যবান মৈত্রী ও সংহতি বন্ধনেরই এক বিশেষ প্রতীক। নিজেদের দেশে এবং সেইসঙ্গে এই অঞ্চলে আপনারা শান্তি ও স্থিতিশীলতা এনে দিয়েছেন। নানা ধরণের চ্যালেঞ্জের মধ্যেও সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির পথে আপনারা আপনাদের দেশ ও অঞ্চলকে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। দীপাবলি উৎসব পালনের আবহে আপনাদের সংসদ কক্ষের সূচনাকালে এমন অনেক আস্থা ও সম্ভাবনার বাতি আপনারা প্রজ্জ্বলিত করেছেন যা ভারত ও উগান্ডাকে যুক্ত করেছে পরস্পরের সঙ্গে। এ সমস্ত কিছুর মধ্যে সবচেয়ে পবিত্র হল নীল নদের উৎসস্থলে অবস্থিত জিনজা যেখানে মহাত্মা গান্ধীর ভস্মাবশেষের অংশ বিসর্জিত হয়েছিল। আফ্রিকা ও আফ্রিকাবাসীর সঙ্গে জীবন-মরণে ওতপ্রতোভাবে যুক্ত ছিলেন তিনি। গান্ধীজির মূর্তির প্রতিষ্ঠাস্থল পবিত্র জিনজায় আমরা গড়ে তুলব একটি গান্ধী ঐতিহ্য কেন্দ্র। ভারতের নিজস্ব স্বাধীনতা সংগ্রাম আফ্রিকার সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। তা শুধুমাত্র আফ্রিকায় গান্ধীজির একুশ বছরের অবস্থানকাল বা তাঁর নেতৃত্বে পরিচালিত প্রথম অসহযোগ আন্দোলন মাত্র নয়। ভারতের কাছে স্বাধীনতা আন্দোলনের নৈতিক বিষয়গুলি অথবা তা অনুসরণ করার শান্তিপূর্ণ পথ শুধুমাত্র ভারতের সীমান্ত অথবা ভারতবাসীর ভবিষ্যতের মধ্যেই কোনদিন বেঁধে রাখা হয়নি। তা ছিল প্রত্যেক মানুষের স্বাধীনতা, মর্যাদা, সমতা ও সুযোগ-সুবিধার লক্ষ্যে এক সার্বজনীন অনুসন্ধান প্রচেষ্টা। আফ্রিকার ক্ষেত্রে তা যতটা প্রযোজ্য, অন্যকোন দেশের ক্ষেত্রে তা ততটা নয়। আমাদের স্বাধীনতার ২০ বছর আগে দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনের নেতৃবৃন্দ ভারতের স্বাধীনতার যুদ্ধকে যুক্ত করেছিলেন বিশ্বের, বিশেষত আফ্রিকার ঔপনিবেশিক শাসনের বিরুদ্ধে সংগ্রামের সঙ্গে। এমনকি, ভারত যখন স্বাধীনতার দ্বারপ্রান্তে, আফ্রিকার ভাগ্য বা অদৃষ্টের কথা তখনও আমরা বিস্মৃত হইনি। মহাত্মা গান্ধী দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন, আফ্রিকা যদি পরাধীনতা থেকে মুক্তি না পায়, তাহলের ভারতের স্বাধীনতা থেকে যাবে অসম্পূর্ণ। স্বাধীন ভারত তাঁর এই কথা কখনই বিস্মৃত হয়নি। বানদুং-এ ভারত আফ্রিকা-এশিয়া বন্ধন প্রচেষ্টাকেই অনুসরণ করেছিল। দক্ষিণ আফ্রিকায় বর্ণ বিদ্বেষের বিরুদ্ধে আমরা ছিলাম দৃঢ় সঙ্কল্পবদ্ধ। ভূতপূর্ব রোডেশিয়ায় যা এখন জিম্বাবোয়ে নামে পরিচিত, গিনি বাসাউ, অ্যাঙ্গোলা এবং নামিবিয়ায় আমরা সাহসিকতার সঙ্গেই নেতৃত্ব দিয়েছিলাম। গান্ধীজির শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধ নেলসন ম্যান্ডেলা, ডেসমন্ড টুটু, অ্যালবার্ট লুথুলি, জুলিয়াস নাইরে এবং কোয়াম নক্রুমার মতো নেতাদের অনুপ্রাণিত করেছিল। ভারত ও আফ্রিকার সুপ্রাচীন জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এবং শান্তিপূর্ণ প্রতিরোধের বিশেষ বল ও শক্তির সাক্ষী হল ইতিহাস। আফ্রিকার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনগুলি নিশ্চিত হয়েছে গান্ধীজির মত ও পথকে অনুসরণ করেই। আফ্রিকার স্বাধীনতা আন্দোলনে ভারত নীতিগত সমর্থন জানিয়ে এসেছে বাণিজ্যিক যোগাযোগের মধ্য দিয়ে। কিন্তু আফ্রিকার স্বাধীনতার তুলনায় আমাদের দেশের স্বার্থ কখনই বড় করে দেখা হয়নি। বিগত সাত দশকে আমাদের অর্থনৈতিক তথা আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের বিষয়গুলিকে উৎসাহিত করেছে দু’দেশের অর্থনৈতিক চাহিদা, নৈতিক মূল্যবোধ এবং আবেগের বন্ধন। বিপণন ব্যবস্থা ও সহায়সম্পদের ন্যায্য ও সমবন্টনই ছিল আমাদের লক্ষ্য। বিশ্ব বাণিজ্যের প্রতিষ্ঠাকে আরও উন্নত করতে আমরা একযোগে পরিশ্রম করে এসেছি। দক্ষিণের দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের বৈচিত্র্যকরণে আমরা কাজ করেছি। শুধুমাত্র পেশাদারিত্বের সুযোগ-সুবিধার অন্বেষণেই আমাদের দেশের শিক্ষক ও চিকিৎসকরা আফ্রিকায় পাড়ি দেননি, স্বাধীন দেশ হিসেবে উন্নয়নের সাধারণ চাহিদাগুলির মধ্যে সংহতিসাধন প্রচেষ্টাতেই তাঁদের সেই আফ্রিকা যাত্রা। পারস্পরিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যেও আসুন, আমরা একযোগে প্রচেষ্টা চালিয়ে যাই।” ভারত ও আফ্রিকা বর্তমানে আত্মবিশ্বাসী, সুরক্ষিত, যুবশক্তির বলে বলীয়ান, উদ্ভাবন প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত এবং উৎসাহী জনসাধারণের দেশ হিসাবে উজ্জ্বল প্রতিশ্রুতিময় এক ভবিষ্যতের মুখে এসে দাঁড়িয়েছে। আফ্রিকা যে ক্রমশ উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে উগান্ডা তারই একটি দৃষ্টান্ত। এখানে লিঙ্গ ক্ষেত্রে সমতা, স্বাস্থ্য ও শিক্ষার মানোন্নয়ন, সংযোগ ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রের প্রসার ঘটে চলেছে। ক্রমবর্ধমান বাণিজ্য ও বিনিয়োগের এক বিশেষ অঞ্চল হয়ে উঠেছে এই দেশ। বেশ কিছু উদ্ভাবন প্রচেষ্টাও আমরা এখানে লক্ষ্য করেছি। ভারতবাসী হিসেবে আফ্রিকার প্রতিটি সাফল্যে আমরা উল্লসিত হই কারণ, আমাদের মধ্যে রয়েছে মৈত্রী সম্পর্কের এক নিবিড় বন্ধন। আফ্রিকার অংশীদার হতে পেরে ভারত গর্বিত। এই মহাদেশের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উগান্ডা। গতকাল উগান্ডার জন্য আমি দুটি ঋণ সহায়তার কথা ঘোষণা করেছি। অতীতের মতোই উগান্ডার জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে আমরা সাহায্য ও সমর্থন যুগিয়ে যাব, তা সে কৃষি, স্বাস্থ্য পরিচর্যা, শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, শক্তি ও পরিকাঠামো, সরকারি ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি এবং প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ – যাই হোক না কেন। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতায় যোগদানের সিদ্ধান্ত নেওয়ায় প্রেসিডেন্ট মুসেভেনি এবং এই সংসদের আমি বিশেষ প্রশংসা করি। উগান্ডার মতোই আফ্রিকার এক বিরাট অংশের সঙ্গে আমাদের কর্মপ্রচেষ্টা ও অংশীদারিত্বকে আমরা নিবিড় করে তুলেছি। গত চার বছরে আমাদের রাষ্ট্রপতি, উপ-রাষ্ট্রপতি এবং আমি আফ্রিকার কমপক্ষে ২৫টি দেশে সফর করেছি। আমাদের মন্ত্রীরা আফ্রিকার প্রায় সবক’টি দেশই সফর করে এসেছেন। ২০১৫-র অক্টোবরে আফ্রিকা-ভারত ফোরামের তৃতীয় শীর্ষ বৈঠকে ৫৪টি দেশের ৪০ জনেরও বেশি রাষ্ট্রপ্রধান ও সরকারি পর্যায়ের আধিকারিকদের স্বাগত জানাতে পেরে আমরা সম্মানিত বোধ করেছি। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার উদ্বোধনী শীর্ষ বৈঠকে আফ্রিকার বহু নেতাকেই আতিথ্যদান করার সুযোগ আমাদের হয়েছে। আফ্রিকায় ১৮টি নতুন দূতাবাস আমরা স্থাপন করছি। উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের বর্তমান অংশীদারিত্বের একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হল আফ্রিকার ৪০টিরও বেশি রাষ্ট্রে ১১ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ১৮০টির মতো ঋণ সহায়তা কর্মসূচি। ভারত-আফ্রিকা ফোরামের সর্বশেষ বৈঠকটিতে সহজ শর্তে ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তা এবং ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের অনুদান সহায়তার আমরা অঙ্গীকার করেছিলাম। প্রতি বছর আফ্রিকার ৮ হাজারেরও বেশি তরুণ ও যুবক-যুবতী বিভিন্ন কর্মসূচির আওতায় প্রশিক্ষণ লাভ করে থাকে। আমাদের প্রচেষ্টা সর্বদাই অগ্রাধিকারের পথ অনুসরণ করে চলবে। ভারতীয় সংস্থাগুলি আফ্রিকায় ৫৪ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগ করেছে। আফ্রিকার সঙ্গে বর্তমানে আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ক ৬২ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি। পূর্ববর্তী বছরের তুলনায় এই পরিমাণ ২১ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে, ভারতে আফ্রিকার রপ্তানি বাণিজ্যও ক্রমশঃ প্রসার লাভ করছে। ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবনমূলক অংশীদারিত্বের প্রসারের মধ্য দিয়ে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কও ক্রমশঃ প্রসার লাভ করছে। আফ্রিকায় ডিজিটাল উদ্ভাবন প্রচেষ্টায় তা এক নতুন মেরুদণ্ডের ভূমিকা পালন করে চলেছে। যে সমস্ত রোগ-ব্যাধি এক সময়ে আফ্রিকার ভবিষ্যতের পক্ষে বিপজ্জনক ছিল, তা দূর করতে ভারতের ওষুধ ও চিকিৎসা ব্যবস্থা এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। স্বাস্থ্য পরিচর্যাকে সকলের জন্য সুলভ ও ব্যয়সাশ্রয়ী করতেও তা সাহায্য করে চলেছে। সমৃদ্ধির লক্ষ্যে যুক্তভাবে কাজ করে যাওয়ার পাশাপাশি শান্তির খোঁজেও আমরা রয়েছি একে অপরের পাশে। ভারতীয় সেনাবাহিনী সহায়তার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আফ্রিকার প্রতি যাতে সেখানকার শিশুদের ভবিষ্যৎ শান্তিপূর্ণ হয়ে উঠতে পারে। ১৯৬০ সালে আমাদের প্রথম কঙ্গো মিশনের সময় থেকে শুরু করে আফ্রিকায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের ১২টিরও বেশি শান্তিরক্ষা প্রচেষ্টায় ভারতীয় শান্তিরক্ষী বাহিনীর মোতায়েন আমাদের গর্বিত করেছে। বিশ্বে রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা মিশনের সবক’টিতেই ১৬৩ জন ভারতীয় আত্মোৎসর্গের এক সর্বোচ্চ নজির স্থাপন করেছেন। যে কোন দেশের পক্ষে তা হল সর্বোচ্চ সংখ্যক। তাঁদের মধ্যে প্রায় ৭০ শতাংশ শুধুমাত্র আফ্রিকাতেই শহীদত্ব বরণ করেছেন। বর্তমানে আফ্রিকায় পাঁচটি শান্তিরক্ষা অভিযানে কাজ করে চলেছেন ৬ হাজারেরও বেশি ভারতীয়। লিবারিয়ায় রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রথম মহিলা পুলিশ ইউনিটে ভারতীয় নারীরা এক বিশেষ ভূমিকা পালনের দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। সন্ত্রাস ও জলদস্যুমোকাবিলায় এবং আমাদের সমুদ্র অঞ্চলকে সুরক্ষিত রাখতে একযোগে কাজ করে যাওয়ার পাশাপাশি, আফ্রিকার দেশগুলির সঙ্গে আমাদের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতাও ক্রমশঃ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। আফ্রিকার সঙ্গে ভারতের এই কর্মপ্রচেষ্টা ১০টি বিশেষ নীতি অনুসরণ করে চলবে। প্রথমত, আমাদের অগ্রাধিকারগুলির শীর্ষে রয়েছে আফ্রিকা। এই অঞ্চলের সঙ্গে আমাদের কর্মপ্রচেষ্টাকে আমরা আরও গভীর ও নিবিড় করে তোলার কাজে যুক্ত থাকব। অতীতের মতোই তা হবে নিরন্তর ও নিয়মিত। দ্বিতীয়ত, আপনাদের অগ্রাধিকারগুলির ভিত্তিতেই গড়ে উঠবে আমাদের উন্নয়নের অংশীদারিত্ব। আফ্রিকার মেধা ও দক্ষতার ওপর আমরা নির্ভর করব। যতদূর সম্ভব স্থানীয় পর্যায়ে দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, সুযোগ-সুবিধার পথকেও আমরা ক্রমশঃ উন্মুক্ত করে তুলব। তৃতীয়ত, আমাদের বাজারকে উন্মুক্ত রেখে ভারতের সঙ্গে বাণিজ্যিক প্রচেষ্টাকে আমরা আরও সহজ ও আকর্ষণীয় করে তুলব। আফ্রিকায় বিনিয়োগের জন্য ভারতীয় শিল্প ব্যবস্থাকে আমরা সাহায্য ও সমর্থন যুগিয়ে যাব। তাই, আফ্রিকার কৃষি ব্যবস্থার উন্নয়নে আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করে যাব। ষষ্ঠত, জলবায়ু পরিবর্তনের মতো সমস্যাগুলির মোকাবিলায় আমাদের এই অংশীদারিত্ব কাজ করে যাবে। এক বিশ্ব জলবায়ু শৃঙ্খল নিশ্চিত করে তোলার কাজে, জীব বৈচিত্র্যের সংরক্ষণে এবং বিশুদ্ধ ও দক্ষ জ্বালানি অবলম্বনে আমরা একযোগে কাজ করে যাব আফ্রিকার সঙ্গে। নবমত, আন্তর্জাতিক কর্মপ্রচেষ্টা আফ্রিকায় যত প্রসার লাভ করবে, আমরা ততই সকলে একযোগে চেষ্টা করে যাব যাতে আফ্রিকা আর কখনও উচ্চাশা ও উচ্চাকাঙ্ক্ষার প্রতিদ্বন্দ্বিতার একটি মঞ্চ হয়ে না উঠতে পারে বরং, আফ্রিকার তরুণ ও যুবকদের আশা-আকাঙ্ক্ষার তা একটি ভরসার স্থল হয়ে দাঁড়ায়। আফ্রিকার জন্য সমান মর্যাদার স্থান ছেড়ে না দিলে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য ভারতের সংস্কার প্রচেষ্টাও অসম্পূর্ণই থেকে যাবে। আমাদের বিদেশ নীতির মূল উদ্দেশ্য হল আফ্রিকার জন্য সমান মর্যাদা প্রতিষ্ঠা। ভারত আপনাদের সঙ্গে নিয়ে আপনাদের জন্যই সেই কাজ করে যাবে। আমরা সোচ্চার হব আপনাদের জন্যই, আপনাদের সঙ্গে নিয়েই। ভারতের দুই-তৃতীয়াংশ এবং আফ্রিকার দুই-তৃতীয়াংশ নাগরিকেরই বয়ঃসীমা বর্তমানে ৩৫ বছরের নিচে। তাই, ভবিষ্যৎ যদি হয় আজকের তরুণদের, তাহলে এই শতাব্দীকে তৈরি করে যাওয়ার, গড়ে দিয়ে যাওয়ার দায়িত্বও কিন্তু আমাদের। উগান্ডায় কথিত আছে যে “আনাইয়েজিতাহিদিফুয়াফাইদি” যার অর্থ হল, যে অতিরিক্ত পরিশ্রম করে সেই লাভবান হয়। পাটনা মেট্রো রেল প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন পাটনা শহরে গ্যাস বন্টন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন পাটনা-তে নদী পাড় সৌন্দর্যায়নের প্রথম পর্যায়ের কাজের সূচনা করবেন বারাউনি তৈল শোধনাগার সম্প্রসারণ কাজের শিলান্যাস করবেন ছাপড়া ও পূর্ণিয়াতে মেডিকেল কলেজের সূচনা করবেন একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প উদ্বোধনের কর্মসূচি রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (১৭ ফেব্রুয়ারি) বিহার সফর করবেন। বারাউনি পৌঁছে তিনি সেখানে রাজ্যের জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন করবেন, সেগুলি পাটনা শহর ও আশপাশের এলাকার যোগাযোগ ব্যবস্থার মানোন্নয়ন ঘটাবে। এই প্রকল্পগুলির ফলে পাটনা শহরে শক্তির যোগান বৃদ্ধি পাবে। পাটনাতে তিনি নদীতীর সৌন্দর্যায়ের প্রথম পর্যায়ের কাজের সূচনা করবেন। শ্রী মোদী ৯৬.৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ কার্মালিচক বর্জ্য নিকাশি নালার শিলান্যাস করবেন। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী বারহ্‌, সুলতানগঞ্জ ও নওগাছিয়া-তে বর্জ্য নিকাশি সম্পর্কিত কাজের সূচনা করবেন। অম্রুত কর্মসূচির আওতায় তিনি রাজ্যের একাধিক এলাকার জন্য ২২টি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। এছাড়াও, তিনি পাটনা শহরে গ্যাস বন্টন প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। বারাউনি তৈল শোধনাগারের ক্ষমতা বার্ষিক ৯ মিলিয়ন মেট্রিক টন বাড়াতে একটি প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। দুর্গাপুর থেকে মুজাফফরপুর ও পাটনা পর্যন্ত পারাদ্বীপ – হলদিয়া – দুর্গাপুর রান্নার গ্যাসের পাইপ লাইন সম্প্রসারণ কাজেরও তিনি সূচনা করবেন। বারাউনি তৈল পরিশোধনাগারে শ্রী মোদী এটিএফ হাইড্রোট্রিটিং ইউনিটের শিলান্যাস করবেন। এই ইউনিটটি চালু হলে বারাউনি শহর ও আশপাশের এলাকায় শক্তির যোগান লক্ষ্যণীয়ভাবে বৃদ্ধি পাবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল মধ্যপ্রদেশ সফর করবেন। ইন্দোরে মধ্যপ্রদেশ শেহরি বিকাশ মহোৎসবে উপস্হিত থাকবেন তিনি। রাজ্যের বিভিন্ন স্হানে চার হাজার কোটি টাকার কয়েকটি নগরোন্নয়ন প্রকল্পেরও রিমোটের সাহায্যে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় বাসস্হান নির্মাণ কর্মসূচি, শহরাঞ্চলে পানীয় জল সরবরাহ কর্মসূচি, নগরাঞ্চলে কঠিন বর্জ্য ব্যবস্হাপনা, শহরাঞ্চলের স্বাস্হ্য ব্যবস্হা কর্মসূচি, নগর পরিবহণ ইত্যাদি। সর্বাপেক্ষা বেশি পরিচ্ছন্ন শহর এবং উন্নততর কাজকর্মের নিরিখে নির্বাচিত শ্রেষ্ঠ শহরগুলিকে পুরস্কৃত করবেন তিনি। এক স্বচ্ছ উদ্ভাবন প্রক্রিয়া, একটি স্বচ্ছ ও সেরা কর্ম পদ্ধতি এবং একটি স্বচ্ছ শিল্পোদ্যোগের জন্যও সংশ্লিষ্টদের হাতে পুরস্কার তুলে দেবেন তিনি। এর আগে রাজগড়ে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে মোহনপুরা প্রকল্পটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রকল্পটি থেকে রাজগড়ের কৃষি জমিতে জল সেচের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে। তাছাড়াও সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের গ্রামগুলিতে পানীয় জলের সুরাহা হবে এই প্রকল্প রূপায়ণের মাধ্যমে। আপাতত এই বিশেষ বাহিনীর দুটি ব্যাটেলিয়নকে ভারত-তিব্বত সীমান্ত বাহিনী, একটি সীমান্ত রক্ষী বাহিনী ও আরও একটিকে অসম রাইফেলস্‌-এর মধ্যে চালু করা হবে। পরবর্তীকালে চারটি ব্যাটেলিয়নকেই পুরোপুরিভাবে জাতীয় বিপর্যয় জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর আওতায় আনা হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সংস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়িত হয় উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের উদ্যোগে। মন্ত্রিসভার আজকের সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী, উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় বিকাশ মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীরা মিলিতভাবে একটি মঞ্চ গঠনের মাধ্যমে সংশ্লিষ্ট আন্তঃরাজ্য বিষয়গুলি সম্পর্কে আলাপ-আলোচনাক্রমে ভবিষ্যতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন। নয়াদিল্লির তিলক মার্গে আগামীকাল অর্থাৎ ১২ জুলাই ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ (এএসআই)-এর একটি নতুন সদর দপ্তর ভবনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সদর দপ্তরের এই নতুন ভবনটিতে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী আলো এবং বৃষ্টির জল পুনর্ব্যবহারের উপযোগী করে তোলার ব্যবস্থা সহ নানা অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। দেশের ৯৯টিঅসম্পূর্ণ সেচ প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করতে কেন্দ্রীয় সরকার যে বিশেষভাবে সচেষ্টরয়েছে, একথারও এদিন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই প্রকল্পগুলির ৫০শতাংশের কাজই এই বছরের মধ্যেই সম্পূর্ণ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এক একটি সেচপ্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার অর্থই হল কৃষি উপকরণ খাতে কৃষকদের ব্যয়ের মাত্রাকেকমিয়ে আনা। ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিচাঁই যোজনা’র আওতায় এ পর্যন্ত দেশের ২০ লক্ষকৃষি জমিকে নিয়ে আসা হয়েছে বলে প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি। এ বছরবাজেটে ঘোষিত ‘অপারেশন গ্রিন্‌স’ টোমাটো, পেঁয়াজ এবং আলু চাষের ক্ষেত্রে কৃষকদেরবিশেষভাবে সাহায্য করবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, উপযুক্ত পরিকাঠামোসহ ২২ হাজার গ্রামীণ হাটকে আরও উন্নত করে সেগুলিকে বৈদ্যুতিন বিপণন কর্মসূচিরমঞ্চে যুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কর্ণাটকের মন্ত্রী শ্রী সি এস শিবালীর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “কর্ণাটকের মন্ত্রী শ্রী সি এস শিবালীর পরিবার ও সমর্থকদের প্রতি আমার সমবেদনা”। কর্ণাটকে তাঁর জনসেবার জন্য শ্রী শিবালী স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। এইউপলক্ষে আয়োজিত একটি প্রদর্শনীতে ‘সবুজায়নের লক্ষ্যে উদ্ভাবন প্রচেষ্টা’র বিষয়টিবিশেষভাবে তুলে ধরা হবে। তাদের অমলিন স্মৃতির বেদনার মধ্যে আমরাও আজ আমাদের মধ্যেকার বন্ধনের মূল সুরকে স্মরণ করছি| যার মধ্যে রয়েছে আমাদের মূল্যবোধ ও আমাদের আকাঙ্ক্ষা এবং আজ আমরা যেসব প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হচ্ছি সেগুলো| ভারত ও আয়ারল্যান্ডকে অবশ্যই ঘনিষ্ঠ অংশিদারিত্ব ও সহযোগিতার ক্ষেত্র সন্ধান করতে হবে| এশিয়া ও ইউরোপের দ্রুত ক্রমবর্ধমান আর্থিক অগ্রগতির দেশগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত ও আয়ারল্যান্ড| দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যে নেতৃত্ব দেওয়ার জন্য আমি আয়ারল্যান্ডকে ধন্যবাদ জানাই| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পবিত্র রমজান মাসের শুভ সূচনা উপলক্ষে জনসাধারণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এক বার্তায় সবার জন্য পবিত্র রমজানের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানান। সহকারী সচিব হিসেবে কার্যকালের শেষ পর্বে ২০১৪ব্যাচের আইএএস আধিকারিকরা আজ এক বিশেষ উপস্থাপনা পেশ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর কাছে। ‘প্রত্যক্ষ সুফল হস্তান্তর’ অর্থাৎ, ডিবিটি,‘স্বচ্ছ ভারত’, ইলেক্ট্রনিক পদ্ধতি-চালিত আদালত, পর্যটন, স্বাস্থ্য এবং উপগ্রহব্যবস্থার প্রয়োগ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় ও প্রশাসনিক কাজকর্মের ওপর আটটিউপস্থাপনা আজ পেশ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আধিকারিকদের সাক্ষাৎকারকালে। কাজকর্ম ও উপস্থাপনায় তরুণ আধিকারিকদের ক্ষমতা ওদক্ষতার বিশেষ প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্নকাজকর্মে তরুণ আইএএস আধিকারিকদের সহকারী সচিব পদে নিয়োগের উদ্দেশ্য হল তাঁদেরতারুণ্য ও অভিজ্ঞতার শ্রেষ্ঠ দিকগুলি কাজে লাগিয়ে এক দক্ষ সরকারি ব্যবস্থা গড়েতোলা। তাঁর এই উদ্দেশ্য যে সফল ও বাস্তব হতে চলেছে তা আজ তিনি বিশেষ সন্তোষেরসঙ্গেই লক্ষ্য করেছেন আধিকারিকদের উপস্থাপনার সময়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার (১৮ই ডিসেম্বর) মহারাষ্ট্র সফরে গিয়ে আবাসন ও নগরোন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রকল্পের সূচনা করেন। কল্যাণ-এ এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী দুটি গুরুত্বপূর্ণ মেট্রো প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এগুলি হল – থানে-ভিওয়ান্দি-কল্যাণ মেট্রো প্রকল্প এবং দহিসর-মিরা-ভায়ান্দার মেট্রো প্রকল্প। প্রকল্প দুটির কাজ শেষ হলে গণ-পরিবহণ ব্যবস্থা ব্যাপকভাবে উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রী কল্যাণ-এ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণী এবং কম আয়ের মানুষজনদের জন্য ৯০ হাজার গৃহনির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। কল্যাণ-এ শিলান্যাস হওয়া এই প্রকল্পটি রূপায়ণে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ৩৩ হাজার কোটি টাকা। পুণেতে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী পুণে মেট্রো পরিষেবার তৃতীয় পর্যায়ের কাজের শিলান্যাস করেন। কল্যাণে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার কিভাবে পরিকাঠামো ও গণ-পরিবহণ ক্ষেত্রের উন্নয়নে গতি আনতে কাজ করে চলেছে। ২০২২ সালের মধ্যে ‘সকলের জন্য গৃহ’-এর লক্ষ্যপূরণে কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গীকারের কথাও তিনি পুনরায় ব্যক্ত করেন। পুণেতে এক সমাবেশে ভাষণে শ্রী মোদী বলেন, যোগাযোগ পরিকাঠামোর উন্নয়নে সরকার সর্বাধিক গুরুত্ব দিচ্ছে। পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামো সহ পরিবহণ ক্ষেত্রের সুসংহতকরণে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। পরিদর্শনকালে তিনি সাইলি-তে মেডিকেল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এছাড়া, দমন ও দিউ এবং দাদরা ও নগর হাভেলিতে একাধিক বিকাশমূলক প্রকল্পের ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে শিলান্যাস করবেন। প্রধানমন্ত্রী ‘এম-আরোগ্য’ অ্যাপ এবং দাদরা ও নগর হাভেলিতে ডিজিটাল মাধ্যমে বাড়ি বাড়ি ঘুরে আবর্জনা সংগ্রহ, পৃথকীকরণ ও কঠিন বর্জ্যের প্রক্রিয়াকরণ চালু করবেন। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটির তথ্যপ্রযুক্তি নীতির প্রকাশও তিনি করবেন। ‘প্রধানমন্ত্রী জন-আরোগ্য যোজনা’র শংসাপত্র এবং বন অধিকার শংসাপত্র কয়েকজন সুবিধাভোগীর হাতে তিনি তুলে দেবেন। সিলভাসার সাইলিতে মেডিকেল কলেজের প্রতিষ্ঠার ফলে দাদরা ও নগর হাভেলি এবং দমন ও দিউ ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার উন্নতি হবে। এর ফলে, ছাত্রছাত্রীরা বিশেষ করে, দুটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপজাতি ও গ্রামীণ এলাকার ছাত্রছাত্রীরা উপকৃত হবেন। এর ফলে, চিকিৎসকদের সংখ্যা বাড়বে এবং ছাত্রছাত্রীদের ডাক্তারি শিক্ষার সুযোগ বৃদ্ধি হবে। অস্ট্রেলিয়ারপ্রধানমন্ত্রী শ্রী ম্যালকম টার্নবুল মঙ্গলবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকেটেলিফোন করেন। তাঁর সাম্প্রতিক ভারত সফরের সাফল্যের জন্য শ্রী টার্নবুলপ্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমোদী দক্ষ পেশাদারদের ভিসা কর্মসূচির নিয়মনীতিতে অস্ট্রেলিয়া সম্প্রতি যে পরিবর্তনএনেছে, তার পরিণাম সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। দু-দেশের আধিকারিকরাই এই বিষয়সম্পর্কে নিজেদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ বজায় রাখবেন বলে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যেমতৈক্য হয়। “বিশ্ব জল দিবসে আসুন আমরা সকলেশপথ গ্রহণ করি প্রতিটি জলবিন্দুর সাশ্রয়ের জন্য। জনশক্তি যদি এই বিষয়টিতেমনস্থির করে, তা হলে জলশক্তি সংরক্ষণে আমরা অবশ্যই সফল হব। বর্তমান বছরটির মূল বিষয়বস্তুকে সঠিকভাবেই চিহ্নিত করেছে রাষ্ট্রসঙ্ঘ, জোরদেওয়া হয়েছে ‘বর্জ্য জল’-এর ওপর। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তিভিত্তিক সক্রিয় প্রশাসন এবং সময় নির্দিষ্ট রূপায়ণের জন্য মাল্টি-মোডাল মঞ্চ প্রগতি’র মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আয়কর সংক্রান্ত অভিযোগগুলি নিষ্পত্তিকল্পে অগ্রগতি বিষয়ে পর্যালোচনা করেন। অর্থমন্ত্রকের আধিকারিকরা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে তাঁকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী পুনরায় বলেন, এই ধরনের কাজের ক্ষেত্রে সমস্ত ব্যবস্হাকে প্রযুক্তি চালিত করে মানবিক হস্তক্ষেপের সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে হবে। দূর্নীতিগ্রস্হ আধিকারিকদের বিরুদ্ধে গৃহীত ব্যবস্হা এবং অন্যান্য বিষয়ে আয়কর দপ্তরের কাজকর্ম সম্পর্কে করদাতাদের জানানোর ওপর প্রধানমন্ত্রী জোর দেন। ২৭তম প্রগতি বৈঠকে দেশে ১১ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি বিভিন্ন প্রকল্পের রূপায়ণ বিষয়ে আলোচনা হয়েছিল। এছাড়া বিভিন্ন ক্ষেত্রে জন অভিযোগ নিষ্পত্তি বিষয়ে কথা হয়েছিল। এর ফলে, বাণিজ্যিক কাজকর্মও হয়ে উঠবে দক্ষ ও সহজতর। জাতির ঐক্য ও সংহতির লক্ষ্যে সর্দার প্যাটেলের বিশেষ ভূমিকা প্রধানমন্ত্রীতুলে ধরেন তাঁর বক্তব্যে। ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় রাজন্য-শাসিত বিভিন্ন প্রদেশকিভাবে মিশে গিয়ে এক অভিন্ন ভারত গড়ে তোলে সেকথাও বিবৃত করেন তিনি। কারণ, ১২৫ কোটি ভারতবাসীর কন্ঠস্বরই ধ্বনিত হয় আমার সেই ভাষণেরমধ্যে। হচ্ছে অধিক বরাদ্দের সঙ্গে আগের দুটি প্রকল্পেরঅধীনের সহায়তাগুলোর সম্মিলিত বিষয়| উত্তর-পূর্বাঞ্চলেররাজ্যগুলোতে কর্মসংস্থানকে উত্সাহিত করার জন্য সরকার এই প্রকল্পের মাধ্যমেপ্রাথমিকভাবে এম.এস.এম.ই. ক্ষেত্রগুলোকে উত্সাহ দিচ্ছে| সরকার এই প্রকল্পে মাধ্যমেকর্মসংস্থান সৃষ্টি করার জন্য সুনির্দিষ্ট সহায়তাও দিচ্ছে| সরকারের অন্য প্রকল্পগুলোর একবা একাধিক ক্ষেত্রে সুবিধা পাওয়া সমস্ত যোগ্য শিল্পকেন্দ্রগুলোও এই প্রকল্পেসুবিধা পাওয়ার জন্য বিবেচিত হবে| এই বিশেষ মুহূর্তে এখানকার বর্তমান হাসপাতাল, মেডিকেল কলেজ এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ভবনগুলি তামিলনাড়ু সরকারের হাতে তুলে দিচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। সহযোগিতার ভিত্তিতে যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমার সরকারের অঙ্গীকারের এ এক বিশেষ দৃষ্টান্ত। আমি আশা করব এই কলেজটি দ্রুত চালু করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করবে তামিলনাড়ু সরকার। ৫৮০ কোটি টাকার এই প্রকল্পটি কোয়েম্বাটোর এবং সন্নিহিত অঞ্চলের ই এস আই সি ভুক্ত সদস্য ও তাঁদের পরিবার-পরিজনদের কাছে এক আশীর্বাদ বিশেষ। এখানকার প্রস্তাবিত ১০০টি এম বি বি এস আসনের মধ্যে ২০টিই ই এস আই প্রকল্পভুক্ত সদস্যদের ছেলেমেয়েদের জন্য সংরক্ষিত থাকবে। এই মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালটিকে রাজ্যের শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য একটি উচ্চমানের আদর্শ চিকিৎসা ও শিক্ষাকেন্দ্র রূপে গড়ে তুলতে আমাদের বিশেষভাবে চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। সকল শ্রমিক-কর্মচারীদের জন্য এক উদার ও সুসংহত সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী গড়ে তুলতে আমার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অসংগঠিত ক্ষেত্রের ৪৫ কোটিরও বেশি শ্রমিক-কর্মচারীদের স্বার্থে আমরা রাষ্ট্রীয় স্বাস্থ্য বিমা যোজনার আওতায় স্বাস্থ্য বিমা কর্মসূচি ছাড়াও চালু করেছি প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা এবং অটল পেনশন যোজনা যার আওতায় জীবন বিমা ও দুর্ঘটনা বিমার সুযোগ পাওয়া যায়। আধুনিক ভারতের রূপকারদের এই অঙ্গীকারের মূলে রয়েছে একটি দৃঢ় বিশ্বাস, তা হল –সুস্থ ও সমৃদ্ধ শ্রমিকই গড়ে তুলতে পারে এক সমৃদ্ধ রাষ্ট্র। সংগঠিত ক্ষেত্রের কর্মীদের জন্য ই পি এফ ও এবং ই এস আই সি-র বড় ধরনের সংস্কারের কাজে আমরা হাত দিয়েছি। ছ’কোটিরও বেশি কর্মচারীকে দেওয়া হয়েছে একটি অভিন্ন অ্যাকাউন্ট নম্বর যাতে তাঁদের ই পি এফ অ্যাকাউন্টগুলি অন্যত্র স্থানান্তরিত হলেও অ্যাকাউন্ট নম্বর কিন্তু অভিন্ন থাকবে। এছাড়াও, ই এস আই সি-র আওতায় অতিরিক্ত কিছু সুযোগ-সুবিধা ও পরিষেবা প্রসারের প্রস্তাবও আমরা করেছি। প্রয়োজন অনুযায়ী, সামর্থ্য ও সুযোগ-সুবিধার কথা চিন্তা করে সদস্য হিসেবে প্রদেয় অর্থ – এই গান্ধীবাদী নীতির ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে ই এস আই প্রকল্পটি। এই নীতি অনুসরণ করে বিমার আওতায় থাকা সদস্য ও তাঁদের পরিবারের লোকজনকে আয়ের আনুপাতিক হারে অর্থ দেওয়ার সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে। তামিলানাড়ুর ৩১টি জেলায় এই কর্মসূচির সুযোগ-সুবিধা আজ সম্প্রসারিত। তামিলনাড়ুতে রয়েছে ১০টি ই এস আই হাসপাতাল। এই হাসপাতালটি রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দেওয়ার ফলে রাজ্য সরকার পরিচালিত ই এস আই হাসপাতালের সংখ্যা দাঁড়াবে আটটিতে। তিরুনেলভেলির ই এস আই সি হাসপাতালটিতে শয্যা সংখ্যা ৫০ থেকে বাড়িয়ে ১০০ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে। বিমার আওতায় থাকা সদস্য এবং তাঁদের পরিবারের লোকজন রাজ্যের ২১০টি ই এস আই চিকিৎসাকেন্দ্রে বহির্বিভাগীয় চিকিৎসার সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। এই ধরনের ৫০টি চিকিৎসাকেন্দ্র রয়েছে কোয়েম্বাটোরে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যে রাজ্যগুলি বাকি ছিল অর্থাৎ, অরুণাচল প্রদেশ, মিজোরাম, মণিপুর এবং সেইসঙ্গে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জেও ই এস আই কর্মসূচি বর্তমানে সম্প্রসারিত হয়েছে। শুধুমাত্র শিল্প ও বাণিজ্যিক গুচ্ছ প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে সারা জেলায় এই কর্মসূচি সম্প্রসারণের প্রস্তাব করা হয়েছে এ বছর ৩১ মার্চের মধ্যে। গত বছরের ১ আগস্ট থেকে নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিক-কর্মচারীদেরও এই কর্মসূচির আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। আমি সরকারি পরিষেবার মানোন্নয়নের পক্ষে। তাই, ই এস আই হাসপাতালগুলিতে পরিষেবার মান উন্নত করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছে ই এস আই-এর আওতাভুক্ত সদস্যদের স্বাস্থ্য সম্পর্কিত নথিপত্র ইলেক্ট্রনিক ব্যবস্থায় সংরক্ষণ এবং অনলাইনে তা সুলভ করে তোলা, আপৎকালীন মেডিকেল হেল্পলাইন স্থাপন এবং প্রবীণ নাগরিক ও অন্যভাবে অক্ষম ব্যক্তিদের জন্য ই এস আই সি হাসপাতালগুলিতে বিশেষ বহির্বিভাগ পরিষেবা চালু করা। পরিচ্ছন্নতার মান উন্নত করতে ‘অভিযান ইন্দ্রধনুষ’-এর আওতায় সপ্তাহের প্রত্যেক দিন রামধনু পদ্ধতিতে হাসপাতালের বিছানার চাদর বদলে দেওয়ার ব্যবস্থা চালু হয়েছে। প্রতিটি রাজ্যে মা ও শিশুর স্বাস্থ্য পরিচর্যা সম্পর্কিত হাসপাতাল ছাড়াও দুটি করে মডেল হাসপাতাল গড়ে তোলার সংকল্প করা হয়েছে ই এস আই সি-র আওতায়। আমি আনন্দিত যে ই এস আই সি তার পরিষেবাকে সম্পূর্ণ করতে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার প্রস্তাব করেছে। ক্যান্সার নির্ণয়, হৃদরোগের চিকিৎসা এবং ডায়ালিসিস ছাড়াও নিগমের পক্ষ থেকে প্রস্তাব করা হয়েছে সরকারি-বেসরকারি সহযোগিতার ভিত্তিতে সবক’টি চিকিৎসাকেন্দ্রে প্যাথোলজি এবং এক্স-রে সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণের। অ্যালোপ্যাথি চিকিৎসা পদ্ধতি ছাড়াও ই এস আই হাসপাতালগুলি থেকে পর্যায়ক্রমে পাওয়া যাবে আয়ুষ চিকিৎসা ব্যবস্থারও সুযোগ। বন্ধুগণ, দেশের শ্রমশক্তির কল্যাণে বেশ কয়েকটি যুগান্তকারী পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আমার সরকার। ২০১৪-র সেপ্টেম্বর মাস থেকে সংশোধনক্রমে কর্মচারী ভবিষ্যনিধি সংস্থার (ই পি এফ ও) আওতায় পেনশন ন্যূনতম মাসিক ১ হাজার টাকা করা হয়েছে। ই পি এফ-এর সুযোগ-সুবিধার ক্ষেত্রে বেতনের ঊর্ধ্বসীমা ৬,৫০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫,০০০ টাকা পর্যন্ত। এই কোডগুলি হল –পারিশ্রমিক, শিল্প সম্পর্ক, সুরক্ষা ও নিরাপত্তা এবং স্বাস্থ্য। ১৬টি শ্রম আইন সম্পর্কে অনলাইন পরিষেবা সম্প্রসারণে চালু হয়েছে একটি ‘শ্রম সুবিধা পোর্টাল’ যাতে কাজকর্ম সম্পর্কে যে কোন সময় এক স্বচ্ছ প্রক্রিয়ার সুযোগও গ্রহণ করা যাবে। ১০ লক্ষ নিয়োগ কর্তাকে দেওয়া হয়েছে একটি এল আই এন সংখ্যা যাতে আটটি শ্রম আইন সম্পর্কে অনলাইনে তারা কাজকর্ম করতে পারেন। চিকিৎসা সংক্রান্ত শিক্ষা ও বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে নজর দেওয়ার ব্যাপারে সুযোগ-সুবিধা সম্প্রসারণের যে বৃহত্তর পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে ই এস আই সি-র সুযোগ-সুবিধার প্রসার এবং এই মেডিকেল কলেজ স্থাপনের প্রস্তাব তারই অন্তর্ভুক্ত। এম বি বি এস পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে আসন সংখ্যা বাড়াতে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকারের যে মেডিকেল কলেজগুলি বর্তমানে রয়েছে সেগুলির মানোন্নয়ন সংক্রান্ত একটি কর্মসূচিও আমরা অনুমোদন করেছি। এ পর্যন্ত ২৩টি মেডিকেল কলেজকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে এম বি বি এস-এর আসন সংখ্যা ১,৭০০-রও বেশিতে উন্নীত করার জন্য। আমি আপনাদের এ খবর দিতে পেরে আনন্দিত হব যে কোয়েম্বাটোর, কন্যাকুমারী, তিরুনেলভেলি এবং মাদুরাইতে অবস্থিত তামিলনাড়ুর চারটি মেডিকেল কলেজে আরও ৩৪৫টি এম বি বি এস আসন সংখ্যা বৃদ্ধির অনুমতি দেওয়া হয়েছে। একই ধরনের উদ্দেশ্য নিয়ে আমরা সারা দেশে গড়ে তুলতে চাইছি এইম্‌স-এর মতো প্রতিষ্ঠান। বন্ধুগণ, সংবিধানের জনক ভারতরত্ন ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের কথা আমরা সকলেই জানি। কিন্তু যে কথা আমরা অনেকেই জানি না তা হল শ্রম আইন রচনার ক্ষেত্রে বাবাসাহেবের অবদান ছিল অপরিসীম। আমি একথা আপনাদের জানাতে পেরে আনন্দিত হব যে গত মাসে ডঃ আম্বেদকরের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী স্মরণে দিল্লিতে এক সম্মেলনের আয়োজন করে কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রক। আমি আপনাদের সকলকেই অনুরোধ জানাব যে এই উপলক্ষে প্রকাশিত ‘ডঃ বি আর আম্বেদকর – লেবার ওয়েলফেয়ার অ্যান্ড এমপাওয়ারমেন্ট : ইনিশিয়েটিভ্‌স টু মেক হিজ ভিশন আ রিয়েলিটি’– এই বইটি পড়ে দেখার জন্য। সমবেতভাবে এবং সহযোগিতার মধ্য দিয়ে কাজ করে যেতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ, কারণ শ্রমিক কল্যাণে ডঃ আম্বেদকরের জীবন দর্শনকে আমরা সফল করে তুলতে চাই। বন্ধুগণ, শিল্পে শান্তি ও সম্প্রীতি সুনিশ্চিত করা সম্ভব তখনই যখন কর্মসংস্থান এবং কর্মের সুযোগ লাভের যোগ্যতার লক্ষ্যের সঙ্গে শিল্পের প্রসার ও উন্নয়নের লক্ষ্যের বিষয়টি সম্পৃক্ত হয়ে ওঠে। তাই, অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশের মধ্য দিয়ে দেশের উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা সকলে মিলে গড়ে তুলতে চাই এক অনুকূল পরিবেশ। আমি রাজ্য সরকারকে এই মর্মে আশ্বাস দিতে চাই যে এই লক্ষ্যে যে কোন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় সকল সময়ই সহযোগিতার হাত প্রসারিত করবে কেন্দ্রীয় সরকার। আসুন, আমরা সকলে মিলে আমাদের দেশকে বসবাস এবং কাজকর্মের এক শ্রেষ্ঠ ভূমি রূপে গড়ে তুলি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভারবৈঠকে বুধবার ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে অডিও-ভিস্যুয়াল সহ-প্রযোজনা সংক্রান্তচুক্তির বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়ে। এই চুক্তির বৈশিষ্ট্য হল, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, যোগের মধ্যে বিশ্বের সমগ্র মানুষকে ঐক্যের বন্ধনে আবদ্ধ রাখার এক অনন্যশক্তি নিহিত রয়েছে। উত্তরাখন্ডের দেরাদুনে অরণ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে চতুর্থ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে এক বিশাল জনসমাবেশে তিনি বৃহস্পতিবার (২১ জুন) ভাষণ দিচ্ছিলেন। এই প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গণে শ্রী মোদী প্রায় ৫০ হাজার যোগ অনুরাগী ও স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে যোগাসন, প্রাণায়াম ও ধ্যান করেন। “আজ সারা বিশ্ব জুড়ে এটি এক গর্বের মুহূর্ত; যোগের সঙ্গে সঙ্গেই সূর্যের উজ্জ্বলতা ও উষ্ণতাকে মানুষ স্বাগত জানাচ্ছেন। দেরাদুন থেকে ডাবলিন, সাংহাই থেকে শিকাগো এবং জাকার্তা থেকে জোহানেসবার্গ – সর্বত্রই যোগ ছড়িয়ে পড়ছে বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। সমগ্র বিশ্বের যোগ অনুরাগীদের এক সুস্পষ্টবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দুনিয়া যোগকে স্বেচ্ছায় গ্রহণ করেছে এবং এর প্রতিফলন ঘটছে প্রতি বছর যোগ দিবস উদযাপনের মধ্য দিয়ে। তিনি আরও বলেন, সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণের উদ্দেশ্যে যোগ দিবস অন্যতম বৃহৎ গণ-আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্ব আমাদের শ্রদ্ধা করুক – এটাই যদি আমরা চাই, তাহলে আমাদের নিজস্ব ঐতিহ্য ও পরম্পরাকে সম্মান জানাতে আমরা কখনই দ্বিধাবোধ করব না। যোগের সম্ভাবনা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ ব্যক্তিগতভাবে এবং সামাজিক দিক থেকে আজ যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন তার অধিকাংশেরই সমাধান যোগের মধ্যে নিহিত রয়েছে। তিনি আরও বলেন, জীবন থেকে টেনশন বা মানসিক উত্তেজনা ও অপ্রয়োজনীয় উদ্বেগ দূর করে যোগ এক শান্তিপূর্ণ, সৃজনশীল ও পরিতৃপ্তিপূর্ণ জীবনের সন্ধান দিতে পারে। বিভেদের পরিবর্তে যোগ ঐক্যবদ্ধ করে। বিদ্বেষের পরিবর্তে যোগ সহমর্মিতা প্রকাশ করে। Ø আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ সংক্রান্ত জাতীয় মিশন – প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা ১৪ আগস্ট, ২০১৮ পরবর্তী সময়ে চালু থাকবে। Ø বর্তমান ওভার ড্রাফট্‌-এর সীমা ৫ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ১০ হাজার টাকা করা হবে। Ø ২ হাজার টাকা পর্যন্ত ওভার ড্রাফট্‌-এর ক্ষেত্রে কোনও শর্তাবলী থাকছে না। Ø ওভার ড্রাফট্‌ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধার লাভ গ্রহণের ক্ষেত্রে বয়সসীমা সংশোধন করে ১৮ থেকে ৬০ বছরের পরিবর্তে ১৮ থেকে ৬৫ বছর করা হয়েছে। এরফলে, প্রতিটি পরিবারের পাশাপাশি প্রত্যেক ব্যক্তিকে আর্থিক পরিষেবা প্রদানের মূল ধারায় নিয়ে আসা যেমন সম্ভব হবে তেমনই, সরকারের বিভিন্ন ভর্তুকিপ্রাপ্ত প্রকল্পের সুবিধা আরও দক্ষতার সঙ্গে তাদের হস্তান্তর করা যাবে। Ø গ্রামীণ এলাকায় ১ লক্ষ ২৬ হাজার ব্যাঙ্কিং করেসপনডেন্ট নিয়োগ করা হয়েছে, যারা এক হাজার থেকে দেড় হাজার পরিবারের কাছে ব্যাঙ্কিং সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছেন। গত জুলাই মাসে ব্যাঙ্কিং করেসপনডেন্টদের মাধ্যমে ‘আধার-কেন্দ্রিক পেমেন্ট প্রণালী’র সাহায্যে প্রায় ১৩ কোটি ১৬ লক্ষ লেনদেন করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা রূপায়ণের জন্য একটি পাইপলাইন বা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে, যার মাধ্যমে জন ধন অ্যাকাউন্ট ও মোবাইল ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে আধারের সংযুক্তি ঘটানো হয়েছে। এই বিশেষ ব্যবস্থার সাহায্যে না কেবল অর্থ সঞ্চয়, ঋণ প্রদান, সামাজিক সুরক্ষার মতো সুবিধা ও পরিষেবা প্রদান করা হচ্ছে। সেই সঙ্গে, ডিবিটি-র মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুফল সরাসরি দেশের গরিব মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। উল্লেখ করা যেতে পারে, দেশের প্রতিটি পরিবারের জন্য অন্তত পক্ষে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলার লক্ষ্যে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ সংক্রান্ত জাতীয় মিশন হিসাবে প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার কথা বিগত ২০১৪-র ১৫ আগস্ট স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ঘোষণা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে, কর-এর ভিত্তি ক্ষয় এবংমুনাফা চালান বন্ধে কর চুক্তি সংক্রান্ত পদক্ষেপ রূপায়ণে বহুপাক্ষিক কনভেনশনস্বাক্ষরের সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। তা আহরণের লক্ষ্যে এই প্রকল্পটি হ’ল ঐ রাজ্যের প্রথম শোধনাগার। আবার একবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আপনাদের মধ্যে আমার আসার সুযোগ হয়েছে। সুদূর দক্ষিণ ভারতের মানুষেরা এখন ওনাম পরবে মেতে রয়েছেন আর গতকালই পুরো দেশ পবিত্র রাখীবন্ধন উৎসব পালন করল। ভারত সরকার সাধারণ মানুষের জন্য সামাজিক সুরক্ষা-সহ আরও কয়েকটি নতুন নতুন যোজনা শুরু করেছে। খুব অল্প সময়েই অনেক মানুষ যে এই যোজনার আওতায় এসেছেন, এতেই আমি আনন্দিত। আমি ছোট্ট একটি অনুরোধ করেছিলাম, রাখীবন্ধন উৎসবে আমাদের বোনেদের যেন এমনই একটি সুরক্ষা যোজনা দেওয়া হয়। আমার কাছে প্রচুর তথ্য এসেছে, যা থেকে বোঝা যাচ্ছে যে পরিকল্পনা শুরু হওয়ার পর থেকে এপর্যন্ত এগারো কোটি পরিবার এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আমাকে এটাও জানানো হয়েছে যে, এর প্রায় অর্ধেক সুবিধা মা-বোনেরা পেয়েছেন। আমি এটাকে ভালো লক্ষণ বলে মনে করছি। সব মা-বোনেদের আমি রাখীবন্ধন উৎসবের অনেক অনেক শুভকামনা জানাই। আমি দরিদ্র জনগণের ক্ষমতাও দেখলাম। অর্থব্যবস্থার মূল ধারা যে ব্যাঙ্কিং – তাকে দরিদ্র মানুষের ঘর পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার উদ্দেশে ‘ব্যাঙ্ক মিত্র যোজনার’ ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। আজ এক লক্ষ পঁচিশ হাজারেরও বেশি ব্যাঙ্ক মিত্র সারা দেশে কাজ করছে। এর ফলে দেশের তরুণরাও কাজ পেয়েছেন। দরিদ্র মানুষও যে ব্যাঙ্ক থেকে পয়সা পেতে পারেন এই বিশ্বাস তৈরি হয়েছে। আমি আবার একবার এর সঙ্গে যুক্ত সবাইকে ধন্যবাদ জানাচ্ছি এবং যে সব দরিদ্র থেকে দরিদ্রতর ভাই ও বোনেরা ব্যাঙ্কে অ্যাকাউন্ট খুলেছেন, তাঁদের অনুরোধ করছি, আপনারা ব্যাঙ্কের সঙ্গে এই সম্পর্ক বিচ্ছিন্ন হতে দেবেন না। এই ব্যাঙ্ক আপনাদেরই, আপনারা আর একে ছাড়বেন না। আমি একে আপনাদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি, এবার একে ধরে রাখার দায়িত্ব আপনাদের। ব্যাঙ্কে আমাদের সকলের খাতা চালু রাখতে হবে। আমার পূর্ণ আস্থা আছে, আপনারা তা রাখবেন। কিছুদিন আগে গুজরাতের হিংসাত্মক ঘটনাবলী গোটা দেশকে বিচলিত করে তুলেছিল। আর এটা তো স্বাভাবিক যে গান্ধী এবং সর্দার প্যাটেলের রাজ্যে যদি তেমন কিছু ঘটে যায়, তাহলে সারা দেশ দুঃখ পায় – ব্যথিত হয়। কিন্তু খুব অল্প সময়ের মধ্যেই গুজরাতের বিচক্ষণ নাগরিক – আমার ভাই-বোনেরা পরিস্থিতিকে সামলে নিয়েছেন। পরিস্থিতির বেসামাল হওয়া আটকাতে তাঁরা সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছেন এবং গুজরাত আবার শান্তির পথ নিয়েছে। সমৃদ্ধিতেই আমাদের সব সমস্যার সমাধান। আমি সত্যি বলছি, তাঁদের সেই মহৎ কথা শোনার এই অভিজ্ঞতা আমার শ্রবণে যেন এক সঙ্গীতের অনুভব নিয়ে এসেছে। সেই পণ্ডিতদের শব্দচয়ন, তাঁদের কথা বলার ধরন, অর্থাৎ সুফি ধারায় যে শান্ত উদারতার ঐতিহ্য রয়েছে – তা যেন এক সঙ্গীতের লয়ের মতো আমার উপলব্ধিতে পৌঁছেছে। সম্ভবত ইসলামের এই সত্য স্বরূপটিকে তামাম দুনিয়ার কাছে ঠিকমতো পৌঁছে দেওয়াই এখন সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন হয়ে পড়েছে। আমার বিশ্বাস, সুফি পরম্পরার এই প্রেম এবং উদারতার বাণী দূর-দূরান্তে পৌঁছে যাবে, যাতে সমগ্র মানবজাতি তথা ইসলামের উপকার হবে। আমি অন্যদেরও বলি, আমরা ভিন্ন সম্প্রদায়ভুক্ত হলেও সুফি ভাবধারাটি আমাদের বোঝা দরকার। আগামী দিনে আমার আর একটি সুযোগ আসতে চলেছে এবং এই নিমন্ত্রণ পাওয়ার জন্য আমি নিজেকে সৌভাগ্যবান মনে করছি। বিশ্বের বহু দেশের বৌদ্ধ ধর্মের পণ্ডিতেরা ভারতের বুদ্ধগয়ায় আসছেন, তাঁরা সারা বিশ্বের মানবজাতির সঙ্গে সম্পর্কিত নানা বিষয়ে আলোচনা করবেন। এই বিদ্বানেরা যে আমাকেও সেখানে আমন্ত্রণ জানিয়েছেন, তাতে আমি আনন্দিত। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী পণ্ডিত নেহরু বুদ্ধগয়ায় গিয়েছিলেন। বিশ্বের এইসব বিদ্বজ্জনের সঙ্গে দেখা হওয়ার এই ক্ষণটি আমার কাছে এক আনন্দের মুহূর্ত হতে চলেছে। আমার প্রিয় কৃষক ভাই-বোনেরা, আমি আরও একবার আপনাদের বিশেষ করে মনের কথা বলতে চাই। আমি এর আগেও এই বিষয় নিয়ে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে কথা বলেছি। আপনারা সংসদে, সার্বজনীন সভায় বা ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে সে কথা শুনেছেন। আমি প্রত্যেকবার একটা কথাই বলে আসছি, জমি অধিগ্রহণ আইন নিয়ে যে বিবাদ চলছে, সেই বিষয়ে সরকারের মন খোলাই আছে। কৃষকদের মঙ্গলের জন্য যে কোন পরামর্শ গ্রহণ করতে আমি রাজি আছি – একথা আমি বহুবার বলে আসছি। কিন্তু আজ কিষাণ ভাই-বোনেদের আমি বলতে চাই যে, জমি অধিগ্রহণ আইনে সংশোধনের প্রস্তাব রাজ্যের তরফ থেকে এসেছে। সকলের মনে হয়েছিল যে, গ্রামের দরিদ্র কৃষকের যদি ভালো করতে হয়, ক্ষেত পর্যন্ত সেচের জল পৌঁছবার জন্য খাল বানাতে হয়, গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার জন্য খুঁটি পুঁততে হয়, গ্রামের জন্য সড়ক তৈরি করতে হয়, গ্রামের গরীব মানুষদের জন্য ঘর তৈরি করতে হয়, গ্রামের দরিদ্র যুবকদের জন্য উপার্জনের ব্যবস্থা করতে হয় – তাহলে আমাদের আইনকে আমলাতন্ত্রের লাল ফিতার ফাঁস থেকে বের করে আনতে হবে। এই সব ভেবেই সংশোধনের প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু আমি দেখলাম যে, এই নিয়ে প্রচুর ভুল ধারণা ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে, কৃষকদের ভয় পাইয়ে দেওয়া হয়েছে। আমার কিষান ভাই-বোনেরা, আমাদের কৃষকেরা কখনই ভুল ধারণা করলে চলবে না আর ভয় তো কখনই পাওয়া চলবে না। আমি কাউকেই কিষাণদের ভুল বোঝাবার বা ভয় দেখানোর সুযোগ দিতে চাই না। আমার কাছে দেশের প্রত্যেকটি দাবিই জরুরি, কিন্তু তার মধ্যেও কৃষকদের দাবি সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আমি ঠিক করেছি, এই মেয়াদ শেষ হতে দেওয়া হোক। অর্থাৎ, আমার সরকার তৈরি হওয়ার আগে যে অবস্থান ছিল, সেটাই আবার ফিরে এলো। কিন্তু তাতে একটা কাজ অসম্পূর্ণ ছিল। গ্রামে গরীব ও কৃষকদের কল্যাণ আমাদের পথ চলার মন্ত্র। তাই আমি ১৫ই অগাস্ট বলেছিলাম যে, শুধু কৃষি বিভাগ নয়, কৃষি ও কৃষক-কল্যাণ বিভাগও তৈরি করা হবে। এই সিদ্ধান্ত আমরা দ্রুত কাজে পরিনত করার চেষ্টা করছি। আমার কৃষক ভাই ও বোনেরা, এখন আর বিভ্রান্তির কোনও কারণ নেই, সংশয়ের কোন কারণ নেই। কেউ যদি আপনাকে ভয় দেখানোর চেষ্টা করে তাহলে ভয় পাবেন না। আমার আরও একটি কথা বলার আছে। দু’দিন আগে ১৯৬৫-র যুদ্ধের পঞ্চাশ বছর পূর্ণ হয়েছে। যখনই ১৯৬৫-র যুদ্ধের কথা ওঠে, তখন লালবাহাদুর শাস্ত্রীর কথা মনে পড়া খুব স্বাভাবিক। ‘জয় জওয়ান জয় কিষাণ’ মন্ত্রটি স্মরণে আসাও খুব স্বাভাবিক। এরকম ঐতিহাসিক ঘটনা আমাদের প্রতিনিয়ত প্রেরণা যোগায়। গত সপ্তাহে সুফি পরম্পরার মানুষজনের সঙ্গ লাভ করার সুযোগ পেয়ে আমি অত্যন্ত সুখী হয়েছি। দেশের গণ্যমান্য বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে অনেকক্ষণ কথা বলার সুযোগ পেয়েছিলাম, তাঁদের কথা শোনার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমার খুব ভাল লেগেছে যে বিজ্ঞানের নানান ক্ষেত্রে ভারত খুব ভাল কাজ করছে। আমাদের বিজ্ঞানীরা সত্যিই খুব ভাল কাজ করছেন। আমি দেখেছি তরুণ বৈজ্ঞানিকেরা কি উৎসাহ-উদ্দীপনার সঙ্গে কথা বলছেন, তাঁদের চোখে নতুন স্বপ্ন আমি দেখেছি। গতবারের ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আমি বলেছিলাম যে, আমাদের শিক্ষার্থীদের বিজ্ঞানের দিকে আরও অগ্রসর হওয়া উচিত। বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে এই আলোচনার পর আমার মনে হয়েছে যে এই ক্ষেত্রে অনেক সুযোগ, অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। আমি দেশের মানুষের কাছ থেকে অনেক চিঠি পেয়েছি। আর যখন ইন্টারভিউ-এর ডাক আসে, তখন প্রতিটি গরীব পরিবার, বিধবা মা খুঁজতে থাকেন, কোথা থেকে সুপারিশ করানো যাবে, কার সাহায্যে এই চাকরি পাওয়া যাবে, কোন খুঁটিকে চাকরির জন্য ধরা যাবে? আরও কি-কি শব্দ এই ব্যাপারে প্রয়োগ করা হয় কে জানে? সবাই দৌড়চ্ছেন, আর হয়ত নীচুস্তরের দুর্ণীতির এও এক কারণ। আমি ১৫ই অগাস্ট বলেছিলাম যে আমি চাই ইন্টারভিউ-এর এই চলে আসা ব্যবস্থা থেকে একটি স্তরের অন্তত মুক্তি পাওয়া উচিত। আমার ভাল লাগছে মাত্র পনের দিনের মধ্যে, সরকার খুব দ্রুত এগিয়ে অল্প সময়ের মধ্যে এই ব্যাপারে কাজ করা শুরু করেছে। নির্দেশ দেওয়া হচ্ছে, আর খুব তাড়াতাড়ি আশা করা যায় ছোটো ছোটো চাকরির ক্ষেত্রে ইন্টারভিউ ব্যবস্থা তুলে দেওয়া সম্ভব হবে। ইদানিং ভারতে বিশ্বের অনেক দেশ থেকে অতিথিরা এসেছেন। স্বাস্থ্য, বিশেষ করে মা ও শিশুর মৃত্যুহার কমানোর জন্য বিশ্বের ২৪টি দেশ একজোট হয়ে ভারতের Call to Action পরিকল্পনায় মতামত দিয়েছেন। আমেরিকার বাইরে অন্য কোনও দেশে এই পরিকল্পনা এই প্রথমবার হ’ল। এটা ঠিক যে আজও আমাদের প্রত্যেক বছর প্রায় পঞ্চাশ হাজার মা আর প্রায় তের লক্ষ শিশু প্রসবকালে কিংবা তার পরবর্তী সময়ে মারা যায়। এটা অত্যন্ত চিন্তাজনক এবং ভয়েরও। যেমন আমরা পোলিও থেকে মুক্তি পেয়েছি, তেমনই মা ও শিশুর টিটেনাসের কারণে মৃত্যু থেকেও মুক্তি পেয়েছি। কিন্তু এখনও আমাদের মা ও সদ্যোজাত শিশুকে বাঁচাতে হবে। ভাই ও বোনেরা, আজকাল ডেঙ্গুর খবর খুব পাওয়া যাচ্ছে। আমি যে স্বচ্ছ ভারতের কথা বলি, তার সঙ্গে এর সরাসরি যোগ আছে। ঘরের ছোট ছোট জিনিসপত্র পরিষ্কার রাখা, জল বিশুদ্ধ রাখার নিয়মকানুন আছে। এই ব্যাপারে ব্যাপক হারে লোকশিক্ষা শুরু হয়েছে কিন্তু সেদিকে আমরা মনোযোগ দিচ্ছি না। কখনও কখনও মনে হয় যে আমরা খুব পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন ঘরে থাকি, খুব ভাল ব্যবস্থা, কিন্তু মাথায় থাকেন না যে আমারই ঘরে যে জল ভরা আছে, তাতে আমি ডেঙ্গুকে আমন্ত্রণ জানাচ্ছি। আমি সবাইকে অনুরোধ করব যে মৃত্যুকে এত সহজে আসতে দেবেন না। চারপাশের নোংরা জমা জলের প্রতি উদাসীন ভাব মৃত্যুর কারণ হয়ে দাঁড়াবে, এটা ঠিক নয়। সারা দেশে প্রায় ৫১৪টি কেন্দ্রে বিনা পয়সায় ডেঙ্গুর পরীক্ষা করার ব্যবস্থা রয়েছে। সময় থাকতে থাকতে পরীক্ষা করানো মৃত্যুকে ঠেকিয়ে রাখার জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই ব্যাপারে আপনাদের সকলের সহযোগিতা একান্ত কাম্য। পরিচ্ছন্নতাকে অত্যন্ত গুরুত্ব দিতে হবে। এখন রাখীবন্ধন থেকে দীপাবলী পর্যন্ত দেশজুড়ে নানান উৎসব চলবে। সব উৎসবের সঙ্গেই আমরা পরিচ্ছন্নতাকে কেন যুক্তি করব না! আপনারা দেখবেন, পরিচ্ছন্নতার এই বিধি পালন আপনার স্বভাব হয়ে যাবে। আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ আমি একটি খুশির খবর শোনাতে চাই। আমি প্রায়ই বলি যে, এখন আমাদের দেশের জন্য জীবন দান করার সৌভাগ্য হয় না, কিন্তু দেশের জন্য বাঁচার সৌভাগ্য তো হয়েছে। এই দুই ভাই ভারতের গৌরব বাড়িয়েছেন। আমার এটা অত্যন্ত ভাল লাগছে যে এই দুই ভাই ‘টিম ইণ্ডিয়া ভিশন ফর ট্রাইবালস্‌’-এর যে উদ্দেশ্য অর্থাৎ, আদিবাসীদের উন্নতির জন্য কাজ করা – এই অভিযানের মাধ্যমে তাঁরা তা সফল করেছেন। দেখুন, দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য প্রত্যেকেই ব্যক্তিগত স্তরে কীভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। যখন এইসব ঘটনা শুনি তখন গর্বে বুক ফুলে ওঠে। কখনও কখনও পুরনো ধ্যান-ধারণার বশবর্তী হয় আমরা নতুন প্রজন্মের প্রতি অন্যায় করে ফেলি। কখনও কখনও যুবকদের সঙ্গে কথা বললে আমরা অনেক কিছু শিখতে পারি। আমি এমন অনেক যুবকের সঙ্গে মিলিত হয়েছি, যাঁরা Sunday on Cycle–কে তাঁদের জীবনের ব্রত করেছেন। কিছু মানুষ বলেন, আমি তো সপ্তাহে একদিন ‘সাইকেল ডে’ পালন করি। আমার শরীর-স্বাস্থ্য এবং পরিবেশের সুরক্ষার জন্যও এটি অত্যন্ত উপযোগী। আর আমি যে যুবক, সেটা ভাবতেও ভাল লাগে। এখন তো আমাদের দেশের অনেক শহরে সাইকেল চালানো হছে এবং সাইকেল চালাতে উৎসাহ দেওয়ার লোকও অনেক আছেন। এটি পরিবেশ সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যের উন্নতির জন্য এক ভাল প্রচেষ্টা। আজ যখন আমার দেশের দুই তরুণ আমেরিকায় দেশের জাতীয় পতাকা তুলে ধরেছেন, তখন ভারতের যুবকদের ভাবনা-চিন্তা যে পথে চলেছে তা উল্লেখ করতে আমার ভাল লাগছে। আমি আজ মহারাষ্ট্র সরকারকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাতে চাই। এই সঙ্গে লণ্ডনের 10, King Henry Road–এর যে বাড়িতে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর থাকতেন, সেটি আমরা কিনে নিয়েছি। মহারাষ্ট্র সরকার বাবাসাহেব আম্বেদকরের এক স্মারক এখানে তৈরি করবেন। ভারতীয়রা, যাঁরা বিশ্বজুড়ে ঘুরে বেড়ান, তাঁদের জন্য লণ্ডনের এই জায়গা এক প্রেরণাস্থল হবে। বাবাসাহেব আম্বেদকরের প্রতি সম্মান জানানোর জন্য মহারাষ্ট্র সরকারের এই দুটি প্রচেষ্টাকেই আমি সাধুবাদ জানাচ্ছি, আমি গর্ব বোধ করছি, আমি তাদের অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, পরবর্তী ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের আগে আপনারা আপনাদের মতামত অবশ্যই আমাকে জানান, কারণ আমার বিশ্বাস, গণতন্ত্র প্রতিটি মানুষের অংশগ্রহণে, প্রতিটি ব্যক্তির মতপ্রয়োগে সফলতার দিকে এগিয়ে চলে। কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে দেশ এগিয়ে যেতে পারে। আপনাদের অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই। পরিবর্তনযখন বাস্তবায়িত হয়, তখন তা সকলেই প্রত্যক্ষ ও উপলব্ধি করেন। আজলক্ষ্ণৌতে আয়োজিত ‘উত্তরপ্রদেশ বিনিয়োগকারী সম্মেলন, ২০১৮’র উদ্বোধনকালে একথা বলেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই রাজ্যে দক্ষতা এবং সহায়সম্পদের প্রাচুর্যরয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রীর মতে, বিভিন্ন ক্ষেত্রের উপযোগী নানাধরনের নীতি রচনা করে তা অনুসরণ করার চেষ্টা করছে এই রাজ্যটি। এর বাস্তবায়নে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘দক্ষ ভারত কর্মসূচি’, ‘স্ট্যান্ড আপইন্ডিয়া’, ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ এবং ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা’র মতোকর্মসূচিগুলি বিশেষভাবে সাহায্য করবে বলে তিনি মনে করেন। ‘প্রধানমন্ত্রীকৃষিসম্পদ যোজনা’ কৃষিক্ষেত্রে বর্জ্যের হার কমিয়ে আনতে বিশেষভাবে সাহায্য করবেবলে উল্লেখ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। চুক্তি/সমঝোতাপত্রের বিষয় ভারতের পক্ষে নথিপত্র বিনিময়কারী সৌদি আরবের পক্ষে নথিপত্র বিনিময়কারী বিদেশ মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ শক্তি, শিল্প ও খনিজ সম্পদ বিষয়ক মন্ত্রী খালিদ আল ফালিহ্‌ কেন্দ্রীয় পর্যটন মন্ত্রক ও সৌদি আরবের পর্যটন ও জাতীয় ঐতিহ্য বিষয়ক কমিশনের মধ্যে পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী আদেল আল জুবের আবাসন ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে সমঝোতাপত্র। সৌদি আরবে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শ্রী আহমেদ জাভেদ বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রী মজিদ বিন আব্দুল্লা আল কোয়াসাবি দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধি করতে ভারতে ইনভেস্ট ইন্ডিয়া এবং সৌদি আরবের জেনারেল ইনভেস্টমেন্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কাঠামোগত সহযোগিতা কর্মসূচি। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ মন্ত্রী মজিদ বিন আব্দুল্লা আল কোয়াসাবি ভারতের প্রসার ভারতী এবং সৌদি আরবের সৌদি ব্রডকাস্টিং নিগমের মধ্যে অডিও ভিজ্যুয়াল অনুষ্ঠান আদান-প্রদানে সহযোগিতা গড়ে তুলতে সমঝোতাপত্র। গণমাধ্যম বিষয়ক মন্ত্রী তুর্কি আব্দুল্লা আল শাবানা কর্ণাটকের খরা ও জলসঙ্কট পরিস্থিতি এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে খতিয়ে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রী সিদ্ধারামাইয়া বলেন, আরটিজিএস পদ্ধতিতে এই আর্থিক সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কৃষকদের কাছে। বৈঠকে আরও জানানো হয়, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বিশেষ খরা ত্রাণ সহায়তা তহবিল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ঐ রাজ্যকে দেওয়া হয় ২০৭ কোটি টাকা। ২০১৬-১৭ বছরে ঐ তহবিল থেকে প্রথম কিস্তিবাবদ ১০৮ কোটি ৭৫ লক্ষ টাকা কেন্দ্রীয় সরকারের কাছ থেকে পেয়েছে কর্ণাটক রাজ্য। এছাড়াও, ৮৩০ কোটি টাকা দেওয়া হবে বিভিন্ন কৃষি প্রকল্পের আওতায়। ভয়াবহ খরা পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর বিভিন্ন সমস্যার কথা বৈঠকে তুলে ধরেন কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজ্যের বিভিন্ন নদ-নদী ও জলাধার ক্রমশ শুকিয়ে আসছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তার প্রামাণ্য একটি চিত্র তিনি তুলে ধরেন তাঁর বক্তব্যে। জল কাদামুক্ত করা, জল সংরক্ষণ এবং ভূগর্ভস্থ জলের পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে সম্ভাব্য পন্থা-পদ্ধতির বিষয়গুলি নিয়ে কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে বিশদভাবে আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী। বর্ষার মরশুম শুরু হওয়ার আগেই আগামী ৩০-৪০ দিনের মধ্যে কৃষির উপযোগী জলাধার তৈরি, বাঁধগুলিকে সারিয়ে তোলা এবং জল কাদামুক্ত করার ওপর বিশেষ জোর দেন তিনি। বর্জ্য ও নিকাশি জলের ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে রাজ্য সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন শ্রী সিদ্ধারামাইয়া। রাজ্য সরকারের এই প্রচেষ্টার বিশেষ প্রশংসা করে রাজ্যের শহর ও মফঃস্বলে এই ধরনের ব্যবস্থার বিশেষ প্রসারের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রাক্তন সাংসদ ও লোকসভার অধ্যক্ষ শ্রী সোমনাথ চট্টোপাধ্যায়ের প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রাক্তন সাংসদ ও লোকসভার অধ্যক্ষ সোমনাথ চট্টোপাধ্যায় ছিলেন ভারতীয় রাজনীতির এক বলিষ্ঠ ব্যক্তিত্ব। তাঁর প্রয়াণে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। আত্মনিমগ্নতা,মস্তিষ্কের পক্ষাঘাতজনিত অক্ষমতা, মানসিক অসুস্থতা এবং বিভিন্ন ধরনের প্রতিবন্ধকতাসম্পর্কিত জাতীয় ট্রাস্টের ১৯৯৯ সালের আইনটির ৪(১) এবং ৫(১) ধারার সংশোধনপ্রস্তাবটি আজ অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিতকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। সংশ্লিষ্ট আইনের৪(১) নং ধারায় উল্লেখ রয়েছে যে ঐ জাতীয় ট্রাস্টের পর্ষদ সভাপতি অথবা সদস্য হিসাবেযাঁরা কাজ করে যাবেন, তাঁরা তাঁদের ৩ বছরের নির্দিষ্ট মেয়াদের অতিরিক্ত সময়কালেওকাজ করে যেতে পারবেন, যতদিন না তাঁদের উত্তরসূরী নিযুক্ত হন। ঐ আইনের ৫(১) নংধারায় বলা হয়েছে যে পর্ষদের সভাপতি কোন সময়ে তাঁর পদ থেকে পদত্যাগ করার ইচ্ছাপ্রকাশ করলেও যতদিন না তাঁর উত্তরসূরী নিযুক্ত হন, ততদিন পর্যন্ত তিনি কাজ চালিয়েযেতে পারবেন। সংশ্লিষ্ট আইনের ঐদুই ধারার উল্লেখ অনুসারে পর্ষদের চেয়ারম্যানকে অনির্দিষ্টকালের জন্য কাজ চালিয়েযেতে হয়। বুধবার এখানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরনেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয় জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি, ২০১৭-তে। ‘সকলের জন্য স্বাস্থ্য’ ব্যবস্থাকে দেশের সকল নাগরিকের কাছেসুসংবদ্ধভাবে পৌঁছে দেওয়া এই নীতির বিশেষ লক্ষ্য। এর আওতায় সার্বজনীন স্বাস্থ্যকর্মসূচি এবং উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবা সুলভে পৌঁছে দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। নতুন স্বাস্থ্য নীতিতে বিভিন্ন সমস্যা চিহ্নিতকরার পাশাপাশি তার সার্বিক সমাধানের ওপরও বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য পরিচর্যার ক্ষেত্রে যে সমস্তত্রুটি-বিচ্যুতি বা ঘাটতি রয়েছে তা মেটাতে ডিজিটাল পদ্ধতি গ্রহণের ওপরও বিশেষ জোরদেওয়া হয়েছে এই নতুন স্বাস্থ্য নীতিতে। গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে সার্বিকভাবে চিকিৎসা ওসেবাকর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির ওপরও। ঐ বছর ৬,৫০০টি গ্রামকে যুক্ত করা হয়েছে এই গ্রামীণ সড়কগুলির সঙ্গে। ধারাবাহিক জীবিকার্জনের ব্যবস্থার মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণ ‘দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা’র লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। দেশের ৩ কোটি পরিবারকে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। আধারের সাহায্যে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে দেওয়া ঋণ সহায়তার ওপর বিশেষভাবে লক্ষ্য রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী প্রবাদপ্রতিম চিত্রশিল্পী শ্রীসৈয়দ হায়দার রাজার প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ইনস্টিটিউট অফ কোম্পানি সেক্রেটারিজ অফ ইন্ডিয়া(আইসিএসআই)-এর সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষের উদ্বোধনে ভাষণ দেন। এই উপলক্ষেআয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী আইসিএসআই-এর সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অভিনন্দন জানান। তিনিবলেন, যাঁরা কোম্পানিগুলিকে আইনানুগভাবে পরিচালনা নিশ্চিত করেন এবং এইসব কোম্পানিরহিসাবনিকাশ যথাযথভাবে বজায় রাখেন, সেইসব ব্যক্তিদের মাঝে আসতে পেরে তিনি অত্যন্তখুশি। তিনি বলেন, তাঁদের কাজ দেশের কর্পোরেট সংস্কৃতি প্রতিষ্ঠায় সহায়ক ভূমিকানিয়েছে। তাঁদের উপদেশ দেশেরকর্পোরেট সংস্থাগুলি পরিচালনার ক্ষেত্রে বিশেষভাবেগুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, আমাদের দেশে মুষ্টিমেয় কিছু মানুষ আছেন, যাঁরা আমাদের সামাজিক কাঠামোরসততাকে দুর্বল করার ও দেশের মর্যাদা হানিরও চেষ্টা চালায়। যাঁরা কেবল নৈরাশ্যের ধারণা ছড়াতে চায়, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের বিরুদ্ধেসাবধানবাণী উচ্চারণ করেন।চলতি অর্থবর্ষের শেষ ত্রৈমাসিকে জাতীয় আয় বৃদ্ধির হার কমে৫.৭ শতাংশ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অতীতেও এই ধরনের আয় বৃদ্ধির হার কমার উদাহরণ তুলেধরেন। তিনি বলেন, সেই সময়ে কম আয় বৃদ্ধির হারের সঙ্গে সঙ্গে ছিল, উচ্চহারেমুদ্রাস্ফীতি, চলতি খাতে উচ্চ হারে ঘাটতি এবং বেশি পরিমাণে রাজকোষ ঘাটতি। এর আগেরত্রৈমাসিকে জাতীয় আয় বৃদ্ধির হার কমার বিষয়টি স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে,সরকার এই প্রবণতা পরিবর্তন করতে বদ্ধপরিকর। তিনি বলেন, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণসংস্কার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে এবং এই প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকবে। তিনি জোরেরসঙ্গে বলেন, দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা যে কোন মূল্যে বজায় রাখা হবে। তিনি সমবেতসকলকে আশ্বাস দেন যে, সরকারের গৃহীত বিভিন্ন ধরনের পদক্ষেপের ফলে আগামী কয়েক বছরেরমধ্যেই দেশকে উন্নয়নের এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হবে। এই সময়কালে ২১টি ক্ষেত্রে ৮৭টি সংস্কারমূলক পদক্ষেপকার্যকর হয়েছে বলে তিনি জানান। বিনিয়োগের ক্ষেত্রে বিপুল বৃদ্ধির বিষয়টিকে তুলেধরতে তিনি বেশ কিছু তথ্য-পরিসংখ্যান তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন যে, সরকারের নীতি এবং পরিকল্পনার ক্ষেত্রে, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণী যাতেসঞ্চয় করতে পারে তা বিবেচনায় রাখা হচ্ছে।এইসব মানুষের জীবন যাতে উন্নত হয়, সেইবিষয়টিকেও মাথায় রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী দুমকা জেলায় স্থিত ঐতিহাসিক মালুতি মন্দিরের সংরক্ষণ ও উন্নয়নে একটি প্রজেক্টের অনলাইনে উদ্বোধন করেন | আগের চুক্তিটি আগামী বছর ২৪ মার্চ তারিখে শেষ হওয়ারকথা ছিল। চুক্তির আওতায়বিশেষভাবে উৎসাহ দেওয়া হবে তথ্য বিনিময়, বিশেষজ্ঞদের আলোচনা বৈঠক, সেমিনার,প্রযুক্তিগত সফর বিনিময় কর্মসূচি এবং যৌথ সহযোগিতার ভিত্তিতে রূপায়িত প্রকল্পগুলিরকাজ। আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ আবার একবার ‘মন কি বাত’-এর এই অনুষ্ঠানে আপনাদের সবার সঙ্গেমুখোমুখি হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছে। কিছু দিন আগে ব্যাঙ্গালুরুতে একটি ঐতিহাসিক ক্রিকেট ম্যাচ হয়েছিল। আপনারা হয়তো বুঝে ফেলেছেন যে আমি ভারত আর আফগানিস্তানের টেস্ট ম্যাচের কথা বলছি। এটা আফগানিস্তানের প্রথম আন্তর্জাতিক টেস্ট ম্যাচ ছিল, আর সকল ভারতীয়দের গর্বের বিষয় যে আফগানিস্তানের এই ঐতিহাসিক ম্যাচটি ভারতের সঙ্গে ছিল। আমি আমাদের ভারতীয় বন্ধুদেরও ধন্যবাদ জানাই, যাঁরা আমাদের খেলোয়াড়দের ক্রীড়ানৈপুণ্য দেখানোর এক মঞ্চ তৈরি করে দিয়েছেন। আফগানিস্তানের যেটা শ্রেষ্ঠ, রাশিদ তার প্রতিনিধিত্ব করেছেন”। এই ম্যাচটি আমাদের সবার কাছে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। যদিও এটা প্রথম ম্যাচ ছিল, এইজন্য মনে থাকাটা স্বাভাবিক, কিন্তু এই ম্যাচ অন্য এক বিষয়ের জন্যওআমার মনে থাকবে। ভারতীয় টিম এমন একটা কাজ করেছে যেটা গোটা বিশ্বে নজিরবিহীন। ভারতীয় টিম ট্রফি নেওয়ার সময়, এক বিজেতা টিম কি করতে পারে তাই করে দেখিয়েছে। ভারতীয় টিম ট্রফি নেওয়ার সময়, আফগানিস্তান টিম — যাঁরা প্রথমবার আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলছে, তাদের আমন্ত্রণ জানায়, আর একসাথে ফোটো তোলে। Sportsman spirit ও sportsmanship কী হতে পারে — এই ঘটনা থেকে আমরা অনুভব করতে পারি। খেলা সমাজকে একজোট করার জন্য এবং আমাদের যুবদের যে কৃতিত্ব রয়েছে, তাদের মধ্যে যে প্রতিভা আছে সেটা খুঁজে বের করার উত্তম পদ্ধতি। ভারত আর আফগানিস্তানের দুই টিমকে আমার শুভকামনা! আমি আশা করি, ভবিষ্যতেও একে অপরের সাথে আমরা পুরো Sportsman spirit বজায় রেখে খেলব আর আনন্দ করবো। আমার প্রিয় দেশবাসী, এই ২১শে জুন চতুর্থ যোগদিবসে এক অভূতপূর্ব দৃশ্য দেখা গেছে। সমগ্র পৃথিবী একজোট নজরে এসেছে। সৌদি আরবে প্রথমবার যোগের ঐতিহাসিক অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছে, আর আমাকে জানানো হয়েছে অনেকগুলো আসনের Demonstration মহিলারাও করেছেন। লাদাখের উঁচু বরফের শিখরে ভারত আর চিনের সেনারা একসাথে মিলে যোগাভ্যাস করেছেন। যোগ সকল সীমাকে অতিক্রম করে, সবাইকে একত্র করার কাজ করেছে। বহু দেশের হাজার হাজার উৎসাহী লোক জাতি, ধর্ম, ক্ষেত্র, রঙ অথবা লিঙ্গ, সমস্ত প্রকারের ভেদ ভুলে এই অনুষ্ঠানকে এক বিশাল বড় উৎসবের রূপ দিয়েছে। যদি সমগ্র পৃথিবীর লোকেরা এত উৎসাহের সঙ্গে ‘যোগ দিবস’-এর অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করেন, তবে ভারতে এর উৎসাহ অনেক গুণ কেন হবে না। দেশ গর্বিত হয়, যখন একশো পঁচিশ কোটি লোক দেখেন, আমাদের দেশের সেনারা জল, স্থল আর অন্তরীক্ষ — তিন জায়গাতেই যোগের অভ্যাস করছেন। কিছু বীর সেনা ডুবোজাহাজে যোগ করেছেন, আবার কিছু সেনা সিয়াচেনের বরফ ঢাকা পাহাড়ের মাথায় যোগাভ্যাস করেছেন। বায়ুসেনার আমাদের যোদ্ধারা আকাশের মাঝে মাটি থেকে ১৫ হাজার ফুট উঁচুতে যোগাসন করে সবাইকে স্তম্ভিতকরে দিয়েছেন। দেখার মতো দৃশ্য ছিল, এঁরা উড়োজাহাজে বসে নয়, হাওয়ায় ভেসে ভেসে যোগ করছিলেন। স্কুল হোক, কলেজ হোক, অফিস হোক, পার্ক হোক, উঁচু বাড়ি হোক বা খেলার মাঠ, সব জায়গায় যোগাভ্যাস হয়েছে। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’-এর যে অনুভূতি আমরা অতীতকাল থেকে বয়ে নিয়ে আসছি, আমাদের ঋষি, মুনি, সন্ন্যাসীরা যার উপর জোর দেন, যোগ সেটাকে আজ সঠিক প্রমাণ করে দেখিয়েছে। আমি মানি, আজ যোগ এক wellness, revolution-এর কাজ করছে। যোগের দ্বারা wellness-এর এক প্রয়াস চালানো হচ্ছে, আমি আশা করি, সেটা এগিয়ে যাবে। ধীরে ধীরে অনেক বেশি মানুষ যোগকে নিজেদের জীবনের অংশ হিসেবে বেছে নেবেন। খুবই সময়োচিত প্রস্তাব! বিপদে-আপদে আমরা ডাক্তারদের শরণাপন্ন হই সারা বছর, কিন্তু পয়লা জুলাই এমন একটা দিনযেদিন আমরা ডাক্তারদের অবদান, ডাক্তারদের অভিজ্ঞতাকে সম্মান করি। সমাজের প্রতি ডাক্তারদের সেবা আর সমর্পণেরজন্যে তাঁদের অকুন্ঠ ধন্যবাদ জানাই। আমরা সেইসব লোক যারা স্বাভাবিক ভাবেই মাকে ভগবানের প্রতিমূর্তি, ঈশ্বরের স্বরূপজেনে পুজো করি — কারণ মা আমাদের জীবন দেয়, জন্ম দেয়। আর ডাক্তাররা তো আমাদের পুনর্জন্ম দেন — একবারনয়, অনেকবারই। তাঁরা আমাদের জীবনচর্যায় পথপ্রদর্শক: “তাঁরা শুধু সুস্থ করেতোলেন না, আরোগ্যের পথ দেখান”। একজন ডাক্তার এখন শুধু চিকিৎসক হিসেবেই দক্ষ নন, তিনি আধুনিক জীবনধারায়স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব বিষয়ে গভীরভাবে পারদর্শী, অভিজ্ঞ। ভারতীয় ডাক্তাররা আজ নিজেদের দক্ষতা আর কর্মক্ষমতারকারণে সারা বিশ্বে সুবিদিত। চিকিৎসা জগতে আমাদের ডাক্তাররা পরিশ্রমী এবং জটিল স্বাস্থ্য-সমস্যার সমাধান করারব্যাপারে পরিচিতি লাভ করেছেন। ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে, সকল দেশবাসীর পক্ষ থেকে আমি আমাদের সব ডাক্তারবন্ধুকে আগামী ১লা জুলাইয়ের ‘ডক্টর্সডে’ উপলক্ষ্যে অনেক শুভকামনা জানাচ্ছি। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমরা সেইসব ভাগ্যবান যাদের জন্ম এই ভারতের ভূমিতে হয়েছে। আপনারা কি জানেন, কবীরদাসজী কেন এই মগহর-এ গিয়েছিলেন? সেই সময়ে একটি প্রচলিত ধারণা ছিল যে যার মগহর-এ মৃত্যু হয়, তিনি স্বর্গে প্রবেশ করতে পারেন না। নিজের সমকালের এই অন্ধবিশ্বাস আর কুসংস্কারকে ভাঙবার জন্যেই সন্ত কবীর মগহরে সমাধিস্থ হন। যা ছিলওঁর জীবনের আদর্শ। অর্থাৎ প্রকৃত সাধক তিনিই, যিনি অন্যদের দুঃখ জানতে পারেন, বুঝতে পারেন। যিনি অন্যের দুঃখ-কষ্টকে বোঝেন না, তিনি নিষ্ঠুর। কবীরদাসজী সামাজিক সমন্বয়ে বিশেষ জোর দিয়েছিলেন। তিনি তাঁর সময়ের থেকে এগিয়ে ভাবতেন। যিনি কোটি কোটি মানুষকে সত্যের পথ দেখিয়েছেন, যা আবহমান কাল ধরে মানুষকে প্রেরণা দিয়ে আসছে। তিনি যেখানেই গেছেন, সমাজের ভালো করার লক্ষ্যে অনেক উদ্যোগ নিয়েছেন। ২০১৯-এ গুরু নানকদেবজীর ৫৫০-তম প্রকাশ পর্ব উদ্‌যাপিত হবে। আমার আবেদন, আসুন, আমরা সবাই মিলে উৎসাহ এবং আনন্দের সঙ্গে এই অনুষ্ঠানে সামিল হই। ১৯১৯ সালের ১৩ এপ্রিল সেই কালোদিনকে কেউ ভুলতে পেরেছে, যখন শক্তির অপব্যবহার করে নিষ্ঠুরতার সমস্ত সীমা পার করে নির্দোষ, নিরস্ত্র এবং নিরীহ সাধারণ মানুষের উপর গুলি বর্ষিত হয়েছিল। শান্তি, অহিংসা, ত্যাগ ও বলিদানেরই সর্বদা জয় হয়। এটাও হয়তো খুব কম মানুষ জানেন, ১৯৩৭ সালে ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জির আমন্ত্রণেই গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশনে বাংলা ভাষায় বক্তব্য রেখেছিলেন। সেটিই প্রথম উদাহরণ ছিল যখন ইংরেজ শাসনকালে কোনও ব্যক্তি কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের কনভোকেশনে বাংলা ভাষায় বক্তব্য রাখেন। ১৯৪৭ থেকে ১৯৫০ পর্যন্ত ড. শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি ভারতের প্রথম শিল্পমন্ত্রী ছিলেন এবং এক অর্থে বলতে গেলে ভারতের শিল্পোন্নতি এবং সার্বিক ভাবে ভারতের প্রগতির মজবুত ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, তাকে এক শক্তিশালী ভিত্তি এবং মঞ্চে দাঁড় করিয়েছিলেন। ১৯৪৮-এ স্বাধীন ভারতের প্রথম শিল্পনীতি, ওঁর পরিকল্পনা ও দূরদৃষ্টির ওপর নির্ভর করেই তৈরি হয়েছিল। ড. মুখার্জির স্বপ্ন ছিল, শিল্পের প্রতিটি ক্ষেত্রে ভারত আত্মনির্ভর, উন্নত ও সমৃদ্ধ হবে। তিনি চাইতেন, ভারত বৃহৎ শিল্প গড়ে তুলুক এবং তার সঙ্গে MSMEs, তাঁতশিল্প, বস্ত্র ও কুটিরশিল্পের প্রতিও পুরোপুরি মনোযোগ দিক। পশ্চিমবঙ্গের উন্নতির বিষয়ে উনি খুব আবেগপ্রবণ ছিলেন। ওঁর চিন্তাভাবনা, বিবেকবোধ ও সক্রিয়তার ফলেই পশ্চিমবঙ্গের একটি অংশ রক্ষা করা গেছে এবং সেটি আজও ভারতবর্ষের অংশরূপে রয়েছে। ফাইল থেকে সরে এসে সরাসরি মানুষের মুখ থেকে শোনার সুযোগ পেয়েছিলাম তাঁদের জীবনে আসা পরিবর্তনের কথা। মানুষজন জানিয়েছেন নিজেদের সংকল্প, সুখ-দুঃখের কথা, উপলব্ধির কথা। যখন একজন সাধারণ মানুষের কথা শুনতাম, তাঁর সহজ সরল শব্দ, বাচনভঙ্গী, নিজস্ব অনুভবের কথা, তখন তা হৃদয়কে স্পর্শ করে যেত। জেনেছিলাম, সুদূর প্রত্যন্ত গ্রামে মেয়েরা common service centre থেকে কীভাবে গ্রামের বয়স্ক, বৃদ্ধদের পেনসন থেকে শুরু করে সাধারণ মানুষের পাসপোর্ট তৈরিতে সাহায্য করে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গে যে যুবকটি দু-তিন বছর আগেও চাকরি খুঁজে বেড়াচ্ছিলেন, এখন তিনি সাফল্যের সঙ্গে নিজের ব্যবসাই শুধু চালাচ্ছেন না, ১০-১৫ জন মানুষকে চাকরি দিয়ে তাদের অন্নসংস্থান করেছেন। এদিকে তামিলনাড়ু, পাঞ্জাব, গোয়াতে স্কুলের ছাত্ররা এই অল্প বয়সেই স্কুলের ‘টিংকারিং ল্যাব’-এ ওয়েস্ট ম্যানেজমেন্টের মত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর কাজ করছে। আমি এই ভেবে আনন্দিত যে, সমগ্র অনুষ্ঠানটিতে সরকারের সাফল্যের থেকে সাধারণ মানুষের সাফল্যের শক্তি, দেশের-দশের শক্তি, ‘নতুন ভারত’ স্বপ্নের শক্তি, সংকল্পের শক্তি আমি অনুভব করেছি। সমাজে কিছু মানুষ থাকেন, যতক্ষণ তাঁরা নিরাশাব্যঞ্জক কথাবার্তা না বলেন, হতাশার কথা না বলেন, অবিশ্বাস তৈরির কাজ না করেন, গড়ার বদলে ভাঙার রাস্তা না খোঁজেন, ততক্ষণ তাঁরা শান্তি পান না। এই রকম বাতাবরণে সাধারণ মানুষজন যখন নতুন আশা, নতুন উৎসাহ নিয়ে নিজের জীবনের উপলব্ধির কথা বলেন, তখন তার সাফল্য সরকারের নয় তাঁদেরই প্রাপ্য। সুদূর প্রান্তের এক ক্ষুদ্র গ্রামের এক ছোট্ট মেয়ের কাহিনিও ১২৫ কোটি মানুষের জন্য প্রেরণা সঞ্চার করে। আমি দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ। আপনারা ৪০-৪০, ৫০-৫০ লাখ লোক এই ভিডিও ব্রিজ অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন আর আমাকে নতুন শক্তি প্রদান করেছেন। আমি আরও একবার আপনাদের প্রতি কৃতজ্ঞতা ব্যক্ত করছি। ভালোর এই ‘সুগন্ধ’, তা আমারও অনুভূত হয়েছে। আপনাদের মনে হতেই পারে এতো সম্পূর্ণ পৃথক পেশা, এর আবার সম্বন্ধ কি করে হয়? আসলে ব্যাপারটা হল এই যে, বেঙ্গালুরুর করপোরেট প্রফেশনালরা, আই-টি ইঞ্জিনিয়াররা একসঙ্গে মিলে একটি ‘সহজ সমৃদ্ধি ট্রাস্ট’ তৈরি করেছেন আর কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যে এই ট্রাস্টকে অ্যাকটিভেট করেছেন, অর্থাৎ কাজে লাগিয়েছেন। এই ট্রাস্টের মাধ্যমে এঁরা কৃষকদের সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন, যোজনা নির্মাণ করেছেন এবং কৃষকদের আয় কীভাবে বৃদ্ধি করা যায়, তার সার্থক প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। চাষের নতুন নতুন পদ্ধতির সঙ্গে জৈবিক চাষ কীভাবে করা যায় এবং এক ফসলের সঙ্গে সঙ্গে অন্য ফসলও কীভাবে ফলানো যায় — এই সমস্ত ট্রেনিং এই ট্রাস্টের মাধ্যমে এই প্রফেশনাল, ইঞ্জিনিয়ার ও প্রযুক্তিবিদদের সহযোগিতা কৃষকভাইদের দেওয়া হচ্ছে। আগে যে সমস্ত কৃষক শুধু একটি মাত্র ফসলের ওপর নির্ভরশীল ছিল, যাতে ফসলও ভাল হত না আর লাভও তেমন হত না, আজ তারা শুধুমাত্র একাধিক ফসলই ফলাচ্ছেন না, এই ট্রাস্টের মাধ্যমে ফসলের সঠিক বিপণন করে ভালো মুনাফা লাভ করছেন। আনাজ উৎপাদনকারী কৃষকেরা এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হয়েছেন। ‘One Nation One Tax’ যা দেশবাসীর স্বপ্ন ছিল, তা আজ বাস্তবায়িত হয়েছে। ‘One Nation One Tax reform’ — এই ব্যবস্থার জন্য যদি আমাকে কাউকে credit দিতে হয়, তবে আমি রাজ্যগুলিকে এই credit দেবো। জি-এস-টি ‘কো-অপারেটিভ ফেডারিলিজম’-এর এক সুন্দর উদাহরণ, যেখানে সমস্ত রাজ্যগুলি একসঙ্গে দেশের কল্যাণের কথা মাথায় রেখে সিদ্ধান্ত নিয়েছিল আর তারই ফলস্বরূপ দেশে এত বড় ট্যাক্স রিফর্ম ব্যবস্থা চালু করা গেছে। জি-এস-টি আসার পর ইনস্পেকটরের স্থান আই-টি অর্থাৎ ইনফরমেশন টেকনোলজি নিয়ে নিয়েছে। ‘রিটার্ন’ থেকে ‘রিফাণ্ড’ পর্যন্ত পুরোটাই বর্তমানে অনলাইনে ‘ইনফরমেশন টেকনোলজি’র মাধ্যমে কার্যকরী হচ্ছে। জি-এস-টি সম্ভবত বিশ্বের সর্ববৃহৎ Tax reform ব্যবস্থা। ভারতে এত বড় Tax Reform সফল হয়েছে কারণ দেশের জনসাধারণ এই ব্যবস্থাকে গ্রহণ করেছেন, আর এই জনশক্তি, জনগ্রাহ্যতাই জি-এস-টি’র সাফল্য সুনিশ্চিত করেছে। সাধারণভাবে মনে করা হয়, এত বড় আকারের reform এত বিপুল জনসংখ্যা সম্পন্ন এত বড় দেশে সঠিকভাবে রূপায়িত হতে ৫ থেকে ৭ বছরের সময় লাগে। কিন্তু সত্যনিষ্ঠ দেশবাসীর উৎসাহ, দেশের সততার উৎসবের প্রবাহ ও জনশক্তির অংশীদারিত্বের পরিণাম হল এই যে, এক বছরের মধ্যেই এই নতুন কর প্রণালী নিজের জায়গা তৈরি করে নিয়েছে, স্থিতি পেয়েছে ও দরকার মতো inbuilt ব্যবস্থার মাধ্যমে নিজেকে সংশোধনও করে চলেছে। এ এক খুব বড় সাফল্য, যা দেশের ১২৫ কোটি দেশবাসী অর্জন করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে দিল্লির আলিপুরে অবস্থিত দিল্লি দুগ্ধ প্রকল্পের মালিকানাধীন ১.৬১ একর জমি ক্ষুদ্র চাষী কৃষিবাণিজ্য সংগঠনকে কিষাণ মান্ডি স্থাপনের জন্য লিজ দেওয়ার প্রস্তাবে অনুমোদিত হয়েছে। খুচরো ও পাইকারী বিক্রেতা, সংস্থা, হোটেল ও কেটারিং সংস্থা, আবাসিক কল্যাণ প্রতিষ্ঠান ও সাধারণ ক্রেতারা এখান থেকে কোন দালাল বা এজেন্ট ছাড়াই সরাসরি কিনতে পারবেন। এই শোধনাগারের রূপান্তরের ফলে এলপিজি ও ডিজেল উৎপাদন দ্বিগুণ হয়ে যাবে এবং এই কারখানার পেট্রো-রসায়ন প্রকল্পগুলির জন্য জ্বালানি উৎপাদনও করা যাবে। কোচির ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড বা বিপিসিএল-এর প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কারখানাটি বিগত ৫০ বছরে ধরে কেরল এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির মানুষের মধ্যে পরিচ্ছন্ন জ্বালানি জনপ্রিয় করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উজ্জ্বলা যোজনাটি বহু মানুষের মনে আনন্দের সঞ্চার করেছে এবং ২০১৬-র মে মাস থেকে দেশের গরিব থেকে গরিবতর পরিবারগুলির কাছে প্রায় ৬ কোটি এলপিজি সংযোগ পৌঁছে দেওয়া গেছে। উল্লেখ্য, ‘গিভ ইট আপ’উদ্যোগের আওতায় ১ কোটিরও বেশি গ্রাহক এলপিজি ভর্তুকির ব্যবস্থা সাগ্রহে ছেড়ে দিয়েছেন। কোচি শোধনাগারের ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন ‘উজ্জ্বলা’যোজনায় এই শোধনাগারটি বড় ভূমিকা রয়েছে।সাম্প্রতিক সম্প্রসারণ এই শোধনাগারের এলপিজি উৎপাদন দ্বিগুণ করবে। আমাকে সাদর অভ্যর্থনা জানানোর জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। ১২৫ কোটি ভারতবাসীর শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন বার্তা আমি বহন করে এনেছি আপনাদের জন্য। দুই সহস্রাব্দেরও আগে বিশাল ভারত মহাসাগরের জলরাশি সংযুক্ত করেছেআমাদের দু’দেশের জনসাধারণকে। নৌ-সম্পর্কের দিক থেকে আমরা পরস্পরের প্রতিবেশী। স্বাহিলির মতো একটি সমৃদ্ধ ভাষাতেও স্থান পেয়েছে বহু হিন্দি শব্দ। উন্নয়নের ক্ষেত্রে আপনাদের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে কেনিয়ার সঙ্গে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে আমরা প্রস্তুত : · আপনাদের পছন্দ ও চাহিদা মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা প্রসারিত হবে; · যে গতিতে কাজ করলে আপনাদের লক্ষ্য পূরণ সম্ভবহবে, সেই গতিতেই কাজ করে যাব আমরা; · তা সে কৃষি বা স্বাস্থ্য পরিচর্যা; · শিক্ষা, পেশাগত শিক্ষা বা প্রশিক্ষণ; · ক্ষুদ্র শিল্প ও বাণিজ্য ক্ষেত্রের বিকাশ; · পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি শক্তি কিংবা বিদ্যুৎ সংবহন; এবং · প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি বৃদ্ধি, যাই হোক না কেন অতীতের মতোই আমাদের অভিজ্ঞতা ও দক্ষতাকে আমরা কাজে লাগাব কেনিয়ার প্রয়োজন ও কল্যাণে। মাননীয় প্রেসিডেন্ট, আমাদের দু’দেশের মধ্যে রয়েছে ক্রমপ্রসারমান এক অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক। আমাদের এই বন্ধন অস্থায়ী নয়, কিংবা শুধুমাত্র লেনদেনের মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ নয়, আমাদের এই সম্পর্ক আজকালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। মিলিত মূল্যবোধ এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠেছে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের গভীরতা। ভারত ও কেনিয়া দুটি দেশেরই রয়েছে তরুণ জনগোষ্ঠী। দুটি দেশই শিক্ষাকে সম্মান জানায়। প্রাকৃতিক সম্পদগুলির সুরক্ষা ও সংরক্ষণে আমরা একে অপরের কাছ থেকে শিক্ষালাভ করতে পারি। এমজি জোমো কেনিয়াট্টা বলেছিলেন, “অতীতের বীর নায়কদের সম্পর্কে অনেক কিছুই শেখে আমাদের ছেলেমেয়েরা। তাই, আমাদের দায়িত্ব হল, ভবিষ্যৎ’কে ভালোভাবে তৈরি করে যাওয়া”। প্রেসিডেন্ট উহুরু কেনিয়াট্টা এবং বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ, আপনাদের সকলের সঙ্গে মিলিতভাবে আমি সুখ ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি কেনিয়ার মাননীয় প্রেসিডেন্ট কেনিয়াট্টার। আমাদের প্রতিবেশী কেনিয়ার অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে প্রার্থনা জানাই প্রার্থনা জানাই, ভারত ও কেনিয়ার জনসাধারণের মৈত্রী সম্পর্ক দীর্ঘস্থায়ী হোক। উইনস্টন ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ফিজি-তে জীবনহানির ঘটনায় ঐ দেশের প্রধানমন্ত্রীর কাছে গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মনিপুরের রাজ্যপাল সৈয়দ আহমেদ-এর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন| অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জানান, শ্রী বেঙ্কাইয়া নাইডুর সঙ্গে তিনি বহু বছর কাজ করার সুযোগ পেয়েছেন। শ্রী নাইডু সবকিছুর ওপর দায়িত্ববোধকে গুরুত্ব দেন বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। শ্রী মোদী বলেন, শ্রী বেঙ্কাইয়া নাইডু নিজের সব দায়িত্ব পালনের জন্য প্রচুর পরিশ্রম করেন এবং সহজেই সব ভূমিকায় মানিয়ে নিতে পারেন। শ্রী নাইডু জনসেবার কাজে ৫০ বছর কাটিয়েছেন- ১০ বছর ছাত্র রাজনীতিতে এবং ৪০ বছর রাজ্য ও জাতীয় স্তরের রাজনীতিতে তিনি যুক্ত রয়েছেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রী নাইডু সবসময়ই সেরা বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগিয়ে এটাই নিশ্চিত করেন যাতে নির্ধারিত কাজ যথাযথভাবে হয়। প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন যে যখন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী শ্রী বেঙ্কাইয়া নাইডুকে মন্ত্রিসভায় নিতে চেয়েছিলেন, তখন শ্রী নাইডু গ্রামোন্নয়নের দায়িত্ব পাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। শ্রী নাইডু হৃদয় থেকে একজন কৃষক এবং কৃষক ও কৃষিকাজের কল্যাণের বিষয়ে খুবই উৎসাহী, বলেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী জানান যে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা শ্রী নাইডুর প্রচেষ্টার ফলে রূপায়িত হয়েছে। এক সময়ে যখন রাজনৈতিক আলোচনা কেবল রেলকে কেন্দ্র করেই হত, সেই সময় তিনি নিশ্চিত করেন যাতে নেতারা সড়ক ও যোগাযোগের অন্য মাধ্যমগুলির বিষয়ে আরো চিন্তাভাবনা করেন। শ্রী মোদী রাষ্ট্রপতির ইংরেজী ও তেলেগু ভাষায় বাঙ্মিতার প্রশংসা করেন। জাপানি ভাষায় একটি জেন বৌদ্ধ-কথা রয়েছে—“ইচিগো ইচিয়ে”, যারমানে হচ্ছে আমাদের প্রতিটি সাক্ষাত অনন্য এবং আমাদের প্রতিটি মুহূর্তকে সযত্নেরক্ষা করতে হবে| পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে সহযোগিতারজন্য আজকের স্বাক্ষরিত চুক্তি হচ্ছে পরিবেশ-অনুকূল বিদ্যুতের অংশীদারিত্ব নির্মাণেআমাদের সংযুক্তির ক্ষেত্রে একটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ| এই চুক্তিতে সহায়তা করার জন্য আমি প্রধানমন্ত্রী আবে,জাপানের সরকার ও সংসদকে ধন্যবাদ জানাই| সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গির দেশ হিসেবে আমরা এই অঞ্চলের অর্থাতইন্দো-পেসিফিক সমুদ্রের জলের দ্বারা পরস্পর সংযুক্ত এলাকাগুলির মধ্যে যোগাযোগ,পরিকাঠামো ও দক্ষতা-নির্মাণে ঘনিষ্টভাবে সহযোগিতায় সম্মত হয়েছি| সফল মালাবার নৌ-মহড়া ইন্দো-প্যাসিফিকের জলরাশির বিশালবিস্তৃতির মধ্যে আমাদের কৌশলগত স্বার্থের সমভাবাপন্নতায় গুরুত্ব আরোপ করেছে| পরমাণু সরবরাহ গোষ্ঠীতে ভারতের সদস্যপদের জন্য সহযোগিতারহাত সম্প্রসারিত করায় আমি প্রধানমন্ত্রী আবে-কে ধন্যবাদ জানাতে চাই| (আপনার মহানুভব আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ) প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী ফিলিপিন্স-এর ম্যানিলায় সোমবার এক বক্তব্য পেশ করেন সেখানেবসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের সামনে। শ্রী মোদীতাঁর ভাষণে বলেন, আসিয়ান অঞ্চলটি ভারতের পক্ষে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এইঅঞ্চলটির সঙ্গে ভারতের সুপ্রাচীন মিলিত ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে আবেগ ও অনুভূতিরমাধ্যমে সুদৃঢ় বন্ধনের কথাও তুলে ধরেন তিনি। বিশেষ করে, গৌতম বুদ্ধ এবং রামায়ণেরপ্রসঙ্গ তিনি তুলে আনেন তাঁর বক্তব্যের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ঐতিহ্যকে লালনকরার ক্ষেত্রে সেখানকার ভারতীয় সম্প্রদায়ভুক্ত মানুষদের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকারয়েছে। শ্রী মোদীবলেন, ভারত কখনই অন্য কোন দেশের ক্ষতি করতে চায় না। প্রথম এবং দ্বিতীয়বিশ্বযুদ্ধের সময় দূরদূরান্তের দেশগুলিতে প্রায় ১.৫ লক্ষ ভারতীয় সেনা তাঁদের জীবনবিসর্জন দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, অতীতের মতো বর্তমান ভারত আজও সমান উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত। একুশের শতককে ‘এশিয়ারশতক’ বলে চিহ্নিত করা হয়েছে একথা যেমন সত্য, তেমনই এই শতকটিকে ‘ভারতের শতক’ করেতোলার লক্ষ্যে আমরা নিশ্চিতভাবেই সম্ভাব্য সকলরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব। উল্লেখ্য, ভারতের বিমানবন্দর কর্ত্যৃপক্ষের এই জমিতে রাজ্য সরকার, সরকারি অফিস, জনপরিষেবা কেন্দ্র এবং পরিযায়ী কিছু সিন্ধ্রী পরিবারকে পুনর্বাসনের জন্য ব্যবহার করছে। এর পরিবর্তে তাঁরা সমপরিমাণ জমি ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষকে দেওয়ার জন্য রাজি হয়েছে। ভাইব্র্যান্ট গুজরাট সম্মেলনে যোগ দিতে মাল্টার প্রধানমন্ত্রী ডঃ যোশেফ মাসকাট ১৭ থেকে ১৯শে জানুয়ারি ভারত সফর করছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সে দেশের অর্থনীতি, বিনিয়োগ, ক্ষুদ্র বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী ডঃ ক্রিশ্চিয়ান কার্ডোনা এবং তাঁর মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিক ও বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল। তাঁদের স্বাগত জানান, গুজরাটের রাজ্যপাল শ্রী ও পি কোহলি। শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে মাল্টার প্রধানমন্ত্রী ডঃ মাসকাট প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর সঙ্গে বৈঠক করেন। দুই প্রধানমন্ত্রী দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অন্যান্য বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও বাড়িয়ে তোলার বিষয়েও আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মাসকাট মাল্টায় আফ্রিকা ও ইউরোপের বাজারের জন্য ভারতীয় ঔষধি এবং আইটি শিল্পকে স্বাগত জানান। উন্নত প্রযুক্তি এবং কৃত্রিম মেধার বিকাশেও ভারতের সহযোগিতা চান তিনি। ব্লক চেন টেকনলজি এবং সিস্টেম মনিটরের জন্য ভারতীয় আইটি সংস্থাগুলির ভূমিকারও তিনি উল্লেখ করেন। আন্তর্জাতিক সৌর ক্ষেত্রে দু’দেশের পূর্ণ সহযোগিতার উল্লেখ করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন দিল্লীর লালকেল্লার ময়দানের ১৫ই আগস্ট পার্কে দশেরা উৎসবে যোগ দেন। প্রধানমন্ত্রী, লব-কুশ রামলীলা কমিটি আয়োজিত রামলীলা প্রত্যক্ষ করেন। অশুভ শক্তির বিরুদ্ধে শুভ শক্তির বিজয়ের প্রতীকস্বরূপ রাবন, কুম্ভকর্ণ এবং মেঘনাদের কুশপুত্তলিকা দাহ অনুষ্ঠানও তিনি দেখেন। নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি ভারতীয় বিমান বাহিনীর মার্শাল অর্জন সিং-এরপ্রয়াণে গভীর শোক জ্ঞাপন করেছেন| তাঁকে মহান বায়ু যোদ্ধা এবং এক অসাধারণ মানুষ হিসেবেউল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর পরিবার-পরিজন এবং তাঁর দুর্ভাগ্যপূর্ণ মৃত্যুতেশোকগ্রস্তদের সমবেদনা জানান| ১৯৬৫ সালে ভারতীয় বায়ুসেনার মার্শাল অর্জন সিং-এরঅসামান্য নেতৃত্ব দেশ কখনও ভুলবে না| ভারতীয় বায়ুসেনা তখন উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপদেখিয়েছিল| এই মহান বায়ু যোদ্ধা ও অসাধারণ মানুষ আই.এ.এফ.-এরমার্শাল অর্জন সিং-এর দুর্ভাগ্যপূর্ণ মৃত্যুতে তাঁর পরিবার-পরিজন এবং শোকগ্রস্তদেরআমি সমবেদনা জানাই| তাঁর চির শান্তি কামনা করি (আর.আই.পি.—রেস্ট ইন পিস)|” প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার মায়ানমারে ‘কালাদান মালটি মডেল ট্রানজিট প্রজেক্ট’-এর জন্য ২৯০৪.০৪ কোটি টাকার সংশোধিত ব্যয় বরাদ্দের অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রকল্প উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বিকল্প সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার সুযোগ করে দেবে এবং এঅঞ্চলের অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভূমিকা পালন করবে। একটি অন্যতম প্রধান যোগাযোগ প্রকল্প হিসেবে এই প্রকল্প ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক ও কৌশলগত যোগসূত্র গড়ে তুলবে। এই প্রকল্পের ডিপিআর অনুযায়ী রাইটস (রেলওয়ের অধীন নির্মাণ সংস্থা) সুপারিশ করেছে যে, কালাদান নদী বরাবর সিতুয়ে বন্দর থেকে কালেতুয়া পর্যন্ত ২২৫ কিমি দীর্ঘ জলপথ গড়ে তোলা হবে এবং কালেতুয়া থেকে ভারত মায়ানমার সীমান্ত পর্যন্ত ৬২ কিমি দীর্ঘ সড়কপথ নির্মাণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নয়াদিল্লিতে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি-ভিত্তিক সক্রিয় প্রশাসন ও সময় অনুযায়ী কর্মসূচি রূপায়ণের বহুপাক্ষিক মঞ্চ ‘প্রগতি’র মাধ্যমে সপ্তম পর্যালোচনা বৈঠকে পৌরহিত্য করেন। আজকের বৈঠকে শ্রী মোদী ‘প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা’ সম্পর্কিত অভাব-অভিযোগগুলি নিয়ে পর্যালোচনা করেন। জন ধন যোজনায় অ্যাকাউন্ট খোলা হলে কি কি সুযোগ-সুবিধা পাওয়া যায় সে সম্পর্কে সাধারণ মানুষকে বিশেষ করে, মোবাইল ফোনের মাধ্যমে অবহিত করতে দ্রুত সচেতনতা কর্মসূচী শুরু করার জন্য তিনি নির্দেশ দেন। ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কাজের অগ্রগতিও প্রধানমন্ত্রী পর্যালোচনা করেন। জাতীয় নিরাপত্তার বিষয়টিতে কোনরকম আপস করা হবে না বলে স্পষ্ট জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী প্রতিবেশী এই দেশটির সীমান্ত লাগোয়া পাঁচটি রাজ্যের মুখ্যসচিবদের সীমান্তে বেড়া দেওয়ার কাজ দ্রুত শেষ করতে সমন্বয়ের মাধ্যমে এগোনোর নির্দেশ দেন। মহাসড়ক, রেল, বিদ্যুৎ, কয়লা ও বিমানবন্দর ক্ষেত্রের পরিকাঠামোর উন্নয়ন নিয়ে জম্মু ও কাশ্মীর, অসম, অরুণাচল প্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, অন্ধ্রপ্রদেশ, ওড়িশা, ঝাড়খণ্ড, ছত্তিশগড় ও গোয়ায় যে কর্মযজ্ঞ চলছে তার অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী জানতে চান। ভুটানের তিনটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। আধার কার্ডের জন্য নাম নথিভুক্তিকরণের অগ্রগতি প্রধানমন্ত্রী খতিয়ে দেখেন। ক্রিসমাস উপলক্ষে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। “সকলকেই শুভ ও আনন্দময় ক্রিসমাসের শুভেচ্ছা জানাই। ভগবান যীশুখ্রীস্টেরমহান শিক্ষাদর্শকে আমরা এই দিনে স্মরণ করি। দু ’ দেশের মধ্যে এই নতুন চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য,বিনিয়োগ, পর্যটন ও সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচির প্রসারের বিষয়টি আরও উৎসাহ লাভ করবে। নতুন দিল্লীতে সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বৈঠকে অক্ষমতা ক্ষেত্রের জন্য ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে অবগত করা হয়। এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অক্ষমতা ক্ষেত্রের জন্য যৌথ উদ্যোগ গ্রহণে উৎসাহ প্রদান করবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (১৯শে জানুয়ারি) সুরাটের হাজিরায় সফর করবেন। হাজিরায় প্রধানমন্ত্রী এল অ্যান্ড টি আর্মার্ড সিস্টেম্‌স কমপ্লেক্স পরিদর্শন করে একটি ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে সেটিকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। নবসারিতে নিরালি ক্যান্সার হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তরও স্থাপন করবেন। অত্যাধুনিক নিরালি ক্যান্সার হাসপাতাল নবসারির প্রথম সুসংবদ্ধ ক্যান্সার হাসপাতাল হবে। দক্ষিণ গুজরাট ও প্রতিবেশী রাজ্যগুলির ক্যান্সার রোগীরা এর ফলে উপকৃত হবেন। সফরের প্রথমদিন, অর্থাৎ বৃহস্পতিবার তিনি গান্ধীনগরে ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য প্রদর্শনের উদ্বোধন করেন। এছাড়া, তিনি আমেদাবাদে সর্দার বল্লবভাই প্যাটেল ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস অ্যান্ড রিসার্চ এবং আমেদাবাদ শপিং ফেস্টিভ্যালের উদ্বোধনও করেছেন। উজবেকিস্তানের প্রেসিডেন্ট মাননীয়মিঃ ইসমাইল কারিমভ, সাংহাই সহযোগিতা সংগঠনের সদস্য রাষ্ট্রগুলির নেতৃবৃন্দ, আমন্ত্রিত নেতৃবৃন্দ, সম্মানিত অতিথি এবং ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, প্রায় এক বছর আগে এই তাসখন্দ থেকেই শুরু হয়েছিল আমার মধ্যপ্রাচ্য সফর। যে উদার ও আন্তরিক অভ্যর্থনা আমি লাভ করেছিলাম মাননীয় কারিমভ এবং উজবেকিস্তানের জনসাধারণের কাছ থেকে তা আজও আমার স্মৃতিতে অমলিন রয়েছে। আজকের এই বৈঠকের চমৎকার উদ্যোগ-আয়োজন এবং আতিথেয়তার জন্য অন্যান্য সকলের সঙ্গে আমিও ধন্যবাদ জানাই মাননীয় কারিমভকে। গত বছর প্রেসিডেন্ট পুতিন দক্ষতার সঙ্গে যে উফা শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করেছিলেন তাতে ভারতকে পূর্ণ সদস্যরূপে গ্রহণ করেছিলেন এসসিও-র নেতৃবৃন্দ। এসসিও-র সঙ্গে ভারতের যুক্ত থাকার ক্ষেত্রে এটি ছিল এক বিশেষ দিকচিহ্ন। আজ কিছুক্ষণ পরে আমরা আমাদের বাধ্যবাধকতা সম্পর্কিত স্মারকলিপিটিতে স্বাক্ষরদান করব। এর সঙ্গে সঙ্গেইআমরা সম্পূর্ণ করবএসসিও-তে ভারতের সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির যাবতীয় প্রক্রিয়া। এই অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের যোগাযোগ দীর্ঘদিনের।তাই সমগ্র বিশ্ববাসীর এক-ষষ্ঠাংশই অন্তর্ভুক্ত এসসিও পরিবারে। এসসিও-তে ভারতের সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিকে বিভিন্ন সদস্য রাষ্ট্র এবং তাদের নেতৃবৃন্দ যে স্বতঃস্ফূর্ত সমর্থন জানিয়েছেন সেজন্য আমি তাঁদের কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। শতাব্দী প্রাচীন ঐতিহাসিক সম্পর্ক রয়েছে আপনাদের সঙ্গে। শুধুমাত্র ভৌগোলিক কারণেই আমরা একে অপরের সঙ্গে যুক্ত হইনি। সংস্কৃতি, খাদ্যসম্ভার এবং বাণিজ্যিক প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে আমাদের পরস্পরের সমাজ ব্যবস্থা। রাশিয়া, চিন এবং মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলির সঙ্গে আমাদের আধুনিক সম্পর্ক গড়ে উঠেছে এইভাবেই। ভারত পূর্ণ সদস্য হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হওয়ায় এসসিও-র পরিধি এখন সুবিস্তৃত প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে ইউরোপ পর্যন্ত এবং উত্তর মেরু অঞ্চল থেকে ভারত মহাসাগর পর্যন্ত। এই গোষ্ঠীগুলির কাছে ভারত বহন করে এনেছে এমন কিছু নীতি যা এসসিও-র দর্শনের সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে সঙ্গতিপূর্ণ। ভারত বরাবরই ইউরেশিয়ার দেশ ও জনগণের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রেখে এসেছে। এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে আমরা একে অপরের অংশীদার। শিল্প, জ্বালানি এবং প্রাকৃতিক সহায়সম্পদের যে ঐশ্বর্য রয়েছে এসসিও-ভুক্ত দেশগুলির তা থেকে নিঃসন্দেহে লাভবান হবে ভারত। বিনিময়ে, ভারতের বলিষ্ঠ অর্থনীতি এবং বিশাল বিপণন ক্ষেত্র এসসিও অঞ্চলের অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে আরও শক্তি যোগাতে সাহায্য করবে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, মহাকাশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, কৃষি, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগক্ষেত্রে ভারতের শক্তি ও ক্ষমতা এসসিও দেশগুলির কাছে ব্যাপকভাবে অর্থনৈতিক সুফল এনে দেবে। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে মানবসম্পদের বিকাশ এবং প্রাতিষ্ঠানিক শক্তি বৃদ্ধির কাজে আমরা একে অপরের অংশীদার হয়ে উঠতে পারি। আমাদের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলি যেহেতু পরস্পরের সঙ্গে মিলে যায়, সেই কারণে উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদেরঅভিজ্ঞতা আপনাদের জাতীয় চাহিদা পূরণের পক্ষে খুবই প্রাসঙ্গিক। একুশ শতকের বিশ্ব হল পরস্পর নির্ভরশীল। এই বিশ্ব-সমাজে রয়েছে অফুরন্ত অর্থনৈতিক সুযোগ ও সম্ভাবনা। এই সংযোগ শুধুমাত্র ব্যবহারিক দিক থেকেই নয়। আমরা আগ্রহী পণ্য, পরিষেবা, মূলধন এবং আমাদের জনগণের মধ্যে সুষ্ঠু ও নিরন্তর বিনিময় প্রচেষ্টায়। কিন্তু শুধুমাত্র তাও যথেষ্ট নয়। আমাদের এই অঞ্চলের প্রয়োজন পৃথিবীর অন্যান্য অংশের সঙ্গে রেল, সড়ক ও আকাশপথে যোগাযোগকে আরও নিবিড় করে তোলা। এসসিও-র দেশগুলির মধ্যে শক্তিশালী বাণিজ্য, পরিবহণ, জ্বালানি, ডিজিটাল শক্তি এবং জনসাধারণের পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগের ক্ষেত্রেভারত হয়ে উঠতে পারে এক সফল অংশীদার। আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডর, চাবাহার চুক্তি এবং আশগাবাত চুক্তি সম্পাদনের সিদ্ধান্তের মধ্যেই প্রতিফলিত হয়েছে আমাদের এই ইচ্ছা ও অভিপ্রায়। এসসিও-র সদস্যপদে ভারতের অন্তর্ভুক্তি এই অঞ্চলকে সমৃদ্ধ করে তুলতে সাহায্য করবে। এর নিরাপত্তাকেও তা আরও জোরদার করে তুলবে। ঘৃণা, হিংসা এবং সন্ত্রাসের উগ্র হুমকির হাত থেকে সমাজ ব্যবস্থাকে রক্ষা করবে আমাদের এই অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। এই লক্ষ্যেই ভারত ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাবে এসসিও-র সদস্য দেশগুলির সঙ্গে। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার সকল স্তরেই আমরা অনমনীয় দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সঙ্গে এক সম্মিলিত উদ্যোগও গ্রহণ করব। পরিশেষে, মিঃ চেয়ারম্যান, আগামী বছর সমান অংশীদার হিসেবেই আমরা অংশগ্রহণ করব আস্তানায় আয়োজিত এসসিও শীর্ষ বৈঠকে। ২০১৭ সালে কাজাখস্তানের নেতৃত্বে এসসিও-র সর্বাঙ্গীণ সাফল্য কামনা করি আমি। আমার প্রিয় দেশবাসীগণ , আপনাদের সবাইকে নমস্কার ! দেশের প্রতিটি কোণে অধিকাংশ পরিবার নিজেদের সন্তানদের পরীক্ষা নিয়ে ব্যস্ত। যাদের পরীক্ষা শেষ হয়ে গিয়েছে সেখানে কিছুটা স্বস্তির পরিবেশ রয়েছে আর যেখানে পরীক্ষা চলছে , সেই সব পরিবার এখনও কিছুটা চাপে আছেন। কিন্তু এমন একটা সময় আমি এটাই বলব যে গত বার আমি ‘ মন কী বাত ’ এ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে যে কথাগুলো বলেছিলাম , ওগুলো আবার শুনে নিন। পরীক্ষার সময় ওই কথাগুলো নিশ্চিতভাবে আপনাদের কাজে লাগবে। আজ ২৬শে মার্চ। ২৬শে মার্চ বাংলাদেশের স্বাধীনতা দিবস। অন্যায়ের বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক লড়াই , বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে বাংলাদেশের জনতার অভূতপূর্ব বিজয়। আজ এই মহান দিবসে , আমি বাংলাদেশের নাগরিক ভাই – বোনেদের স্বাধীনতা দেবসের অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। আমরা সবাই এ ব্যাপারে গর্বিত যে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর , তাঁর স্মৃতি , আমাদের দু ’ দেশেরই ঐতিহ্য। বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীতও গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের রচনা। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সম্পর্কে একটা খুব আকর্ষণীয় তথ্য এই যে , ১৯১৩ সালে উনি শুধু নোবেল পুরস্কারে সম্মানিত এশিয়ার প্রথম ব্যক্তিই ছিলেন না , ইংরেজরা ওঁকে নাইটহুড উপাধিও দিয়েছিল। মাঠে – ময়দানে হেসেখেলে বেড়ানো ওই বালকের জীবনে এক নতুন অভিমুখ এনে দিল জালিয়ান ওয়ালাবাগের নৃশংস হত্যাকান্ড। আর ১৯১৯ সালে ১২ বছরের ওই বালক ভগৎ আমাদের সবার প্রিয় , আমাদের সবার প্রেরণা – শহীদ ভগৎ সিং। জীবনের সব স্বপ্ন ভারত মায়ের মুক্তির জন্য বলি দিয়েছিলেন তাঁরা। আর ওই তিন বীর আজও আমাদের প্রেরণা। ভগৎ সিং , সুখদেব আর রাজগুরুর বলিদানের কাহিনি আমরা শব্দে বর্ণনা করতে পারব না। গোটা ব্রিটিশ প্রশাসন এই তিন যুবককে ভয় পেত। জেলে তাঁরা বন্দী , ঠিক হয়ে গিয়েছে ফাঁসির দিন , কিন্তু তাও তাঁদের নিয়ে কী করা যায় এই চিন্তা উদ্বিগ্ন করে তুলেছিল ব্রিটিশদের। আর তাই তো ২৪শে মার্চ যেখানে ফাঁসী দেওয়ার কথা সেখানে ফাঁসি হয়ে গেল ২৩ তারিখ। লুকিয়েচুরিয়ে করা হল এটা যা সাধারণভাবে দেখা যায় না। আর এর পরে ওঁদের মৃতদেহ আজকের পাঞ্জাবে এনে ইংরেজরা চুপচাপ পুড়িয়ে দিয়েছিল। অনেক বছর আগে যখন প্রথমবার আমি সেখানে যাওয়ার সুযোগ পেলাম তখন ওই ভূমির কম্পন যেন অনুভব করতে পেরেছিলাম। আর আমি দেশের তরুণদের অবশ্যই বলব , যখনই পাঞ্জাবে যাওয়ার সুযোগ পাবে , ভগৎ সিং , সুখদেব , রাজগুরু , ভগৎ সিংয়ের জননী এবং বটুকেশ্বর দত্তের সমাধিতে অবশ্যই যেও। এই সময়েই স্বাধীনতার হাতছানি , তার তীব্রতা , তার উন্মাদনা বেড়ে চলল। এক দিকে ভগৎ সিং , সুখদেব , রাজগুরুর মত বীরেরা সশস্ত্র বিপ্লবের প্রেরণা দিয়েছিলেন যুবকদের। অন্যদিকে , আজ থেকে ঠিক ১০০ বছর আগে , ১৯১৭ সালের ১০ই এপ্রিল , চম্পারণে সত্যাগ্রহ করেছিলেন মহাত্মা গান্ধী। এ বছর চম্পারণ সত্যাগ্রহের শতবর্ষ পূর্তি। ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে গান্ধী ভাবধারা আর গান্ধী শৈলী , এর প্রকট রূপ প্রথমবার দেখা গেল চম্পারণে। স্বাধীনতার গোটা আন্দোলনে এ ছিল এক পট পরিবর্তন , বিশেষ করে সঙ্ঘর্ষের রীতি – পদ্ধতির দৃষ্টিকোণ থেকে। এই সেই পর্ব , চম্পারণের সত্যাগ্রহ , খেড়া সত্যাগ্রহ , আহমেদাবাদে কারখানার শ্রমিকদের হরতাল – আর এই সব কিছুর মধ্যে মহাত্মা গান্ধীর ভাবধারা আর কাজের শৈলীর গভীর প্রভাব দেখা যাচ্ছিল। ১৯১৫ সালে গান্ধীজী বিদেশ থেকে ফিরে এলেন আর ১৯১৭ সালে বিহারের এক ছোটো গ্রামে গিয়ে উনি দেশকে নতুন প্রেরণা দিলেন। আজ আমাদের মনে মহাত্মা গান্ধীর যে ছবি রয়েছে , সেই ছবির ভিত্তিতে আমরা চম্পারণ সত্যাগ্রহের মূল্যায়ন করতে পারব না। কল্পনা করুন এক জন মানুষের কথা , যিনি ১৯১৫ সালে হিন্দুস্থানে ফিরে এলেন , কাজ করলেন মাত্র দুটো বছর। না জানতেন দেশকে , না ছিল ওঁর কোনো প্রভাব , সেটা ছিল আরম্ভ মাত্র। সেই সময় ওঁকে কতটা কষ্ট সহ্য করতে হয়েছিল , কতটা পরিশ্রম করতে হয়েছিল , তার আন্দাজ করতে পারি আমরা। কিন্তু যদি একশো বছর আগের গান্ধীর কথা ভাবেন , ওই চম্পারণ সত্যাগ্রহের গান্ধীর কথা , তাহলে জনজীবনের অঙ্গণে সদ্য প্রবেশ করা যে কোনো ব্যক্তির জন্য চম্পারণ সত্যাগ্রহ এক গভীর অধ্যয়নের বিষয়। জনজীবনে অংশগ্রহণের কাজটা শুরু করা যায় কীভাবে , নিজেকে কতটা পরিশ্রম করতে হয় আর গান্ধী কীভাবে সেটা করেছিলেন , এটা আমরা ওঁর থেকে শিখতে পারি। আর সে ছিল একটা সময় , যখন তাবড় তাবড় নেতারা , যাঁদের নাম শুনি আমরা , সে রাজেন্দ্রবাবু হোন , আচার্য কৃপালনী হোন – সবাইকে গ্রামে পাঠিয়েছিলেন গান্ধী। মানুষের সাথে মিশে , মানুষ যে কাজ করছে তাকেই স্বাধীনতার রঙে রাঙিয়ে তোলা – এর পদ্ধতি শিখিয়েছিলেন। গান্ধী যেন একটা নয়া পয়সার দুটো পিঠ বানিয়ে দিয়েছিলেন – এক পিঠে লড়াই তো অন্য পিঠে সৃষ্টি। এক দিকে জেল ভরে দেওয়া তো অন্যদিকে গঠনমূলক কাজে নিজেকে সঁপে দেওয়া । এক বড় অদ্ভূত ভারসাম্য ছিল গান্ধীর কার্যশৈলীর মধ্যে। সত্যাগ্রহের অর্থ কী হতে পারে , অসহমত কী হতে পারে , এত বড় একটা সাম্রাজ্যের সামনে অসহযোগের অর্থ কী হতে পারে – শুধু শব্দ দিয়েই নয় , সফল উপস্থাপনের মাধ্যমে এক সম্পূর্ণ নতুন বিচারধারা উপস্থাপন করেছিলেন গান্ধী। আজ যখন গোটা দেশ চম্পারণ সত্যাগ্রহের শতবর্ষ পূর্তি পালন করছে , নতুন ভারতের সাধারণ মানুষের শক্তি কত অসীম , এই অসীম শক্তিকে স্বাধীনতা সংগ্রামের মত , স্বরাজ থেকে সুরাজের যাত্রাতেও , একশো পঁচিশ কোটি ভারতবাসীর সংকল্পশক্তি , পরিশ্রম ; সর্বজন হিতায় সর্বজন সুখায় – এই মন্ত্রকে মূলধন করে দেশের জন্য , সমাজের জন্য কিছু করে দেখানোর অখণ্ড প্রয়াসই সেই সমস্ত মহাপুরুষের স্বপ্নকে সাকার করবে যাঁরা দেশের স্বাধীনতার জন্য প্রাণ দিয়েছেন। আর এই একবিংশ শতাব্দীতে এমন কোন ভারতীয় আছেন – যিনি পরিবর্তন চান না , যিনি দেশের প্রগতিতে অংশীদার হতে চান না। একশো পঁচিশ কোটি ভারতবাসীর প্রগতির এই ইচ্ছেই এক নতুন ভারত – New India – র বীজ বপণ করবে। New India , অর্থাৎ নতুন ভারত কোনো সরকারী কার্যক্রম নয় , কোনও রাজনৈতিক দলের ইস্তেহার নয় , বা কোনও Project – ও নয়। এ হল একশো পঁচিশ কোটি দেশবাসীর আহ্বান। সমগ্র ভারতবাসী এক অতুল , অভিনব দেশ গঠন করতে চান। এ হল তাঁদের মনের এক আশা , এক সংকল্প , এক আকাঙ্ক্ষা। এমন অনেক মানুষ আছেন , যাঁরা নিয়মিত হাসপাতালে যান রুগীদের সেবা করতে। অনেকে আছেন যাঁরা রক্তদানের প্রয়োজন শুনলে স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে রক্তদানের জন্য এগিয়ে আসেন। যদি আমরা এই চিন্তাভাবনাকে একসঙ্গে সংগঠিতরূপে দেখি , তাহলে বোঝা যাবে , এটা কত বড় শক্তি। New India – র প্রসঙ্গে আলোচনা হলে , ভিন্ন মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গিও যে উঠে আসবে তা খুবই স্বাভাবিক ও অনিবার্য। কিন্তু এটাও সত্যি যে সমগ্র দেশবাসী যদি সংকল্প করে এবং তাকে বাস্তবায়িত করার পথে নির্দিষ্ট পদক্ষেপ নিতে থাকে , তাহলে নতুন ভারতের স্বপ্ন সফল হতে পারে। জরুরি নয় যে এসমস্ত কাজ বাজেট বা সরকারী খরচায় হতে হবে। এটুকুই বলব যে , প্রত্যেকে নিজেদের নাগরিকধর্ম পালন করুন , কর্তব্য পালন করুন। এইভাবেই ‘ নতুন ভারত ’ গঠনের সূচনা হতে পারে। আগামী ২০২২ – এ ভারতের স্বাধীনতার পঁচাত্তর বছর হতে চলেছে। আসুন , আমরা এই উপলক্ষে ভগৎ সিংহ , রাজগুরু , সুখদেবকে স্মরণ করি , স্মরণ করি চম্পারণ সত্যাগ্রহকে। দৈনন্দিন জীবনে আমরা অনায়াসেই এই ধরনের পদক্ষেপ নিতে পারি। উপস্থিত প্রত্যেকেই এই প্রয়াসকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংকল্প নিয়েছেন। আমার মনে হয় , বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মজয়ন্তী আসতে এখনও যে ক ’ দিন সময় আছে , তার মধ্যে ‘ ভীম ’ অ্যাপ – এর প্রভূত প্রচার হওয়া দরকার। নগদ লেনদেন এবং নোটের ব্যবহার কমানোর এই প্রচেষ্টায় আসুন আমরা যোগদান করি। আমার প্রিয় দেশবাসী , আমি খুশি যে যখনই ‘ মন কি বাত ’ – এর জন্য আপনাদের পরামর্শ চাই , তখন অনেক মতামত আসে। কিন্তু আমি লক্ষ করেছি যে , স্বচ্ছতা বিষয়ে আগ্রহের অভাব নেই। দেরাদুন থেকে গায়ত্রী নামের এক কন্যা – যে একাদশ শ্রেণির ছাত্রী , সে ফোনে একটি বার্তা পাঠিয়েছে। আদরণীয় প্রধান শিক্ষক – প্রধান মন্ত্রীজি , আপনাকে প্রণাম জানাই। সর্বপ্রথম আপনাকে অভিনন্দন জানাচ্ছি যে আপনি এই নির্বাচনে প্রচুর ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন। আমি আপনাকে আমার মনের কথা জানাতে চাই। আমার মনে হয় স্বচ্ছতা কতটা জরুরি সেটা সাধারণ মানুষকে বোঝাতে হবে। আমি প্রতিদিন একটি নদীর পাশ দিয়ে যাই , যেখানে লোকজন অনেক আবর্জনা ফেলে নদীটিকে দূষিত করে। এই নদীটি রিস্পনা পুল দিয়ে আসছে এবং আমাদের বাড়ি পাশ দিয়ে বয়ে গেছে । এই নদীকে স্বচ্ছ রাখার জন্য আমি পাড়ায় পাড়ায় গিয়ে লোকজনের সঙ্গে কথা বলেছি , মিছিল করেছি , কিন্তু বিশেষ লাভ হয়নি। আমি আপনাকে অনুরোধ করবো যে আপনি এখানে একটি দল পাঠান অথবা সংবাদপত্রের মাধ্যমে এই বিষয়টিকে প্রকাশ করুন। ভাই – বোনেরা , আপনারা দেখুন – একাদশ শ্রেণির একটি মেয়ে কতটা কষ্ট পাচ্ছে। নদীতে ফেলা ময়লা আবর্জনা দেখে সে কতটা ক্রুদ্ধ ! এটাকে আমি একটা ভালো সংকেত মনে করি। আমি তো এটাই চাই যে ১২৫ কোটি দেশবাসীর মনে আবর্জনার প্রতি ক্রোধ সৃষ্টি হোক। একবার ক্রোধ সৃষ্টি হলে , অসন্তুষ্টি সৃষ্টি হলে , ক্ষোভ তৈরি হলে আমরা আবর্জনার বিরুদ্ধে অভিযানে কিছু নিশ্চয় করতে পারবো। এটা ভালো ব্যাপার যে গায়ত্রী নিজে ক্রোধ প্রকাশ করেছে , আমাকে পরামর্শ দিয়েছে এবং একই সঙ্গে একথাও বলেছে যে সে অনেক চেষ্টা করেছে , কিন্তু বিফল হয়েছে। যখন থেকে স্বচ্ছতার আন্দোলন শুরু হয়েছে , সচেতনতা বেড়েছে। সবাই সদর্থক রূপে এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। এটা একটা আন্দোলনের রূপ নিয়েছে। আবর্জনার প্রতি ঘৃণা ধীরে ধীরে বাড়ছে। মানুষ সচেতন হোক , সক্রিয় ভাবে অংশ গ্রহণ করুক , আন্দোলন হোক – এর তো একটা নিজস্ব গুরুত্ব আছেই। কিন্তু আন্দোলনের থেকেও স্বচ্ছতার বিষয়টি অভ্যাসের সঙ্গে বেশী জড়িত । তাই এই আন্দোলন অভ্যাস পরিবর্তনের আন্দোলন , এই আন্দোলন স্বচ্ছতার অভ্যাস তৈরি করার আন্দোলন। সার্বিকভাবে এই আন্দোলন সম্ভব। কাজ কঠিন , কিন্তু এটা আমাদের করতেই হবে। আমার বিশ্বাস যে দেশের নবীনদের মধ্যে , ছেলেদের মধ্যে , শিক্ষার্থীদের মধ্যে , যুবকদের মধ্যে যে সচেতনতা এসেছে , সেটা সামগ্রিকভাবে একটা ভালো পরিনামের ইঙ্গিত দিচ্ছে। আজকে আমার ‘ মন কি বাত ’ – এ যাঁরা গায়ত্রীর কথা শুনছেন , আমি সেই সব দেশবাসীকে বলতে চাইবো যে গায়ত্রীর বক্তব্য যেন আমাদের সকলের বক্তব্য হয়। যা যা চোখের সামনে দেখি , সবই থালায় নিয়ে নিই এবং শেষ পর্যন্ত খেতে পারি না। যতটা থালায় নিই অর্ধেকও পেটে যায় না , আর সেটা সেখানে ফেলে দিয়েই বেরিয়ে পড়ি। কখনও ভেবে দেখেছেন আমরা যে অভুক্ত খাবার ফেলে দিই , তাতে আমরা কতটা অপচয় করি। এটা কী কখনও ভেবে দেখেছেন যদি অপচয় না করেন , তাহলে এই খাবার কত গরীব মানুষের পেট ভরাতে পারে। এই বিষয়ে আলাদা করে বোঝানোর কিছু নেই। সাধারণত আমাদের বাড়িতে মা যখন ছোটো বাচ্চাদের খাবার পরিবেশন করেন , তখন বলেন যতটা খেতে পারবে , ততটাই নাও। এই মর্মে কিছু প্রচেষ্টা তো হয়ই কিন্তু তা সত্ত্বেও এই ব্যাপারে উদাসীনতা সামাজিক অব্যবস্থার প্রকাশ। গরীবদের প্রতি এটা অন্যায়। দ্বিতীয়তঃ যদি সাশ্রয় হয় , তাহলে পরিবারেরও আর্থিক লাভ হবে। সমাজের জন্য ভাবনা ভালো , কিন্তু এই বিষয়টি এমন যে এতে পরিবারও সুফল পাবে । আমি এই বিষয়ে কিছু বলতে চাই না কিন্তু আমি চাই যে সচেতনতা বাড়ুক। আমি কিছু যুবকদের চিনি , যাঁরা এই ধরনের আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত। আমাদের দেশের নবযুবকরাই এই ধরনের পরিশ্রম করেন। দেশের সব রাজ্যেই কোথাও না কোথাও এই ধরনের মানুষ পাওয়া যাবে। ওঁদের কাজ আমাদের প্রেরণা জোগাতে পারে , যাতে আমরা খাবার অপচয় না করি। আমরা ততটাই নেব , যতটা খাব। পরিবর্তনের জন্য এটাই তো পথ। এবং যাঁরা স্বাস্থ্যসচেতন , তাঁরা তো সবসময়েই বলে থাকেন – প্লেটও একটু খালি রাখুন , পেটও একটু খালি রাখুন । স্বাস্থ্যর কথাই যখন এল , তখন বলি , ৭ এপ্রিল ‘ বিশ্ব স্বাস্থ্য দিবস ’ । রাষ্ট্র সঙ্ঘ ২০৩০ পর্যন্ত ‘ Universal HealthCoverage ’ অর্থাৎ ‘ সকলের জন্য স্বাস্থ্য ’ লক্ষ্য স্থির করেছেন। আমরা depression শব্দের সঙ্গে পরিচিত , কিন্তু যদি আক্ষরিক অর্থ করি , তো কিছু মানুষ একে অবসাদও বলেন। একটি হিসেব অনুসারে বিশ্বে প্রায় পঁয়ত্রিশ কোটির বেশি মানুষ মানসিক অবসাদের শিকার। আমার দেশবাসীকে বলতে চাই , depression এমন নয় যে তার থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না। একটা মনোবৈজ্ঞানিক পরিসর তৈরি করলেই সে মুক্তির পথ মিলতে শুরু করে। নিজের বন্ধুদের সঙ্গে বাবা – মা ’ র সঙ্গে , ভাই – বোনদের সঙ্গে , শিক্ষকের কাছে মন খুলে বলুন – আপনার ভেতরে কী হচ্ছে। হোস্টেলে থাকলে অনেক সময় একাকীত্ব গ্রাস করে। আপনি কি কখনো ভেবেছেন ঐ মানুষটি কেন এমন করছে ? আপনি নিশ্চিত থাকুন , এগুলিই depression – এর প্রথম লক্ষণ। কেউ সবার মাঝখান থেকে নিজেকে সরিয়ে রেখে একা থাকতে চাইলে খেয়াল রাখুন – তাকে একা হতে দেবেন না। যার বা যাদের সঙ্গে সে থাকতে পছন্দ করে তাদের সঙ্গে থাকতে দিন। সেবার মন নিয়ে অন্যের সমস্যার সমাধান করতে শুরু করলে আপনার আত্মবিশ্বাস ফিরে আসবে। অন্যের সঙ্গে নিজেকে মেলাতে পারলে , সেবা করতে পারলে এবং তা যদি নিঃস্বার্থভাবে করতে পারেন , দেখবেন কি অনায়াসে মন হালকা হয়ে যায়। যোগ অভ্যাস কিন্তু মনের স্বাস্থ্য সুন্দর রাখার উপকারী পথ। মনোকষ্ট থেকে মুক্তি , দমবন্ধ অবস্থা থেকে মুক্তি এবং প্রসন্ন মনোভাবের জন্য যোগ এক অত্যন্ত কার্যকরী উপায়। প্রতিবছর ২১ জুন ‘ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ’ উদ্ ‌ যাপন করা হয়। এবার তৃতীয় বর্ষ হতে যাচ্ছে। আপনারা এখন থেকে তৈরি হতে শুরু করুন। সবাই মিলে মহাসমারোহে এই যোগ উৎসব পালন করতে হবে। ‘ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ’ উদ্ ‌ যাপনে আপনাদের যদি কিছু পরামর্শ দেওয়ার থাকে , আমার মোবাইল অ্যাপ – এর মাধ্যমে আমায় সে সব ভাবনা পাঠিয়ে দিন ‌ , পথ দেখান । যোগ নিয়ে যত কবিতা , গান লিখতে পারেন , লিখতে থাকুন , যাতে সাধারণ মানুষের মধ্যে এক উদ্দীপনা আসতে পারে। কিছুদিন আগে ভারত সরকার এক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এজন্য ভারত সরকার একটা অত্যন্ত জরুরি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক্ষেত্রে বিশ্বের মাত্র দু – তিনটি দেশই আমাদের থেকে এগিয়ে আছে। হবু মায়েদের জন্য এই বাড়তি ছুটির ব্যবস্থা এক মহৎ প্রয়াস বলে আমি মনে করি। এই শিশুরা যখন বড়ো হয়ে উঠবে , দেশের সম্পদ হবে। এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তে মায়েদের স্বাস্থ্যও ভালো থাকবে। সংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরতা প্রায় ১৮ লক্ষ মায়েদের এই নিয়ম খুব কাজে আসবে। এই মহাপুরুষদের জীবন আমাদের অনুপ্রেরণা দেয় ও New India গঠনের শক্তি যোগায় । আমাদের দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নববর্ষ উৎসব নানান ভাবে পালিত হয়। মহারাষ্ট্রে ‘ গুড়ি পড়োয়া ’, অন্ধ্র – কর্ণাটকে নববর্ষে পালিত হয় ‘ উগাড়ি ’ , সিন্ধি ‘ চেটি চাঁদ ’, কাশ্মিরী ‘ নবরেহ ’, আওয়োধ – এ ‘ সংবৎসর পূজা ’, বিহারের মিথিলায় ‘ জুড় শীতল ’ আবার মগধে ‘ সতুওয়ানি ’ পালনে নববর্ষের উৎসব পালন করা হয়। বিপুল দেশ ভারতে বৈচিত্র্যে ভরা রয়েছে। আপনাদের সবাইকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাই ! অনেক অনেক ধন্যবাদ ! বৃহস্পতিবার আসিয়ান-ভারত অংশীদারিত্বের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে আসিয়ান নেতৃবৃন্দের জন্য এক স্মারক শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করার সুযোগ ঘটেছিল আমার। এই আসরে আমাদের সঙ্গে তাঁদের উপস্থিতি আসিয়ান রাষ্ট্রগুলির পক্ষ থেকে শুভেচ্ছার এক নজির বিহীন নিদর্শন। এই অসামান্য শুভেচ্ছার জবাবে এই শীতের সকালে ভারত তাঁদের বন্ধুত্বের উষ্ণতায় বরণ করে নিতে এগিয়ে এসেছে। ভারত-আসিয়ান অংশীদারিত্ব মাত্র ২৫ বছরে পা দিয়েছে – এটা হতেই পারে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক দুই সহস্রাব্দেরও বেশি প্রাচীন। শান্তি ও মৈত্রী, ধর্ম ও সংস্কৃতি, শিল্পকলা ও বাণিজ্য, ভাষা ও সাহিত্য প্রভৃতির অন্তরে নিহিত সম্পর্কগুলি এখন ভারত ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অসাধারণ বৈচিত্র্যপূর্ণ সম্পর্কের প্রতিটি বিভিন্নতায় উপস্থিত, আর এর ফলে আমাদের এই দুই অঞ্চলের মানুষের মধ্যে সম্পর্ক ও স্বাচ্ছন্দ্যের এক অনন্য বলয় গড়ে উঠেছে। দু-দশকেরও বেশি আগে ভারত প্রয়োজন মতো পরিবর্তনসাধনের মাধ্যমে নিজেকে মেলে ধরেছিল। আর শত শতাব্দী ধরে অর্জিত প্রবৃত্তির মাধ্যমে এটা স্বাভাবিকভাবেই পূর্বের দিকে ঘুরে গিয়েছিল। এইভাবে পূবের সঙ্গে ভারতের পুনরাত্মীকরণের অভিযাত্রা শুরু হয়। ভারতের ক্ষেত্রে আমাদের বেশিরভাগ বৃহৎ প্রধান অংশীদার ও বাজারের অধিকাংশই হ’ল আসিয়ান ও পূর্ব এশিয়া থেকে উত্তর আমেরিকা পর্যন্ত পূবের দিকে ছড়িয়ে আছে। আর দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া ও আসিয়ান ভূমি ও সমুদ্রপথে আমাদের দুই নিকট প্রতিবেশী হ’ল আমাদের ‘পূবে তাকাও’ নীতির মূল ধাত্রীভূমি এবং গত তিন বছরে পূবের প্রতি সক্রিয় হওয়ার নীতির মূল ভিত্তি। এই পথে সংলাপ-অংশীদারের ভূমিকা থেকে যাত্রা শুরু করে আসিয়ান ও ভারত কৌশলগত অংশীদারে পরিণত হয়েছে। আমরা আমাদের বিরাট ভিত্তিগত অংশীদারিত্বকে ৩০টি ব্যবস্থার সাহায্যে এগিয়ে নিয়ে গেছি। প্রতিবার আসিয়ানে নতুন সদস্যভুক্তির সঙ্গে সঙ্গে আমরা কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত অংশীদারিত্ব বাড়িয়ে চলেছি। আমরা আমাদের সমুদ্রগুলিকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখার জন্য এক সঙ্গে কাজ করছি। আমাদের বাণিজ্য এবং লগ্নির প্রবাহও অনেক গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আসিয়ান হ’ল ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম ব্যবসায়িক অংশীদার; আর ভারত হ’ল আসিয়ানের সপ্তমতম। ভারতের বহির্মুখী বিনিয়োগের ২০ শতাংশের বেশি যায় আসিয়ান দেশগুলিতে। সিঙ্গাপুরের নেতৃত্বে আসিয়ান হ’ল ভারতের বিনিয়োগের প্রধান উৎস। এই অঞ্চলে ভারতের মুক্ত বাণিজ্য চুক্তিগুলি হ’ল এই ক্ষেত্রে তার সবথেকে প্রাচীন এবং সারা পৃথিবীর নিরিখে সবচেয়ে উচ্চাকাঙ্খী। এই অঞ্চলে মানুষজনের মধ্যে ৬০ লক্ষেরও বেশি জনসংখ্যাবিশিষ্ট ভারতীয় সমাজ – বৈচিত্র্যে শিকড় প্রোথিত রেখে গতি সঞ্চারের সুতীব্র আকাঙ্খা সহ – আমাদের দুই দেশের মধ্যে এক অসামান্য মানব সংযোগ করে তুলেছে। প্রধানমন্ত্রী এবার প্রতিটি আসিয়ান সদস্য দেশ সম্পর্কে তাঁর মতামত তুলে ধরেছেন থাইল্যান্ড আসিয়ান গোষ্ঠীর মধ্যে ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার হিসাবে উঠে এসেছে এবং এটি আসিয়ান গোষ্ঠী থেকে ভারতে গুরুত্বপূর্ণ বিনিয়োগকারীদেরও অন্যতম। ভারত ও থাইল্যান্ডের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য গত এক দশকে দ্বিগুণেরও বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত ও থাইল্যান্ডের মধ্যে সম্পর্কে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যাপকভাবে প্রসারিত। দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়াকে যুক্ত করে আমরা হলাম গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক অংশীদার। আমরা আসিয়ান, পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠক ও বিমস্টেক (বহু ক্ষেত্রব্যাপী কারিগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার বঙ্গোপসাগরীয় বলয়-ভিত্তিক সহযোগিতা) প্রভৃতি গোষ্ঠীতে যেমন ঠিক তেমনই মেকং-গঙ্গা সহযোগিতা, এশীয় সহযোগিতা সংলাপ এবং ভারত মহাসাগরীয় বলয় সঙ্ঘের ক্ষেত্রেও ঠিক তেমনভাবেই ঘনিষ্ঠ সহযোগীর ভূমিকা পালন করে আসছি। ভারতে ২০১৬ সালে থাইল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীর রাষ্ট্রীয় সফর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ওপর দীর্ঘমেয়াদী প্রভাব ফেলেছে। মহান ও জনপ্রিয় নৃপতি ভূমিবল আদুল্যদেজ-এর প্রয়ানে সারা ভারতবর্ষ তাদের থাই ভাই-বোনদের সঙ্গে অশ্রুমোচন করেছে। ভারতবাসী থাইল্যান্ডের বন্ধুত্বপূর্ণ জনসাধারণের সঙ্গে সেদেশের নতুন নৃপতি রাজা মহাবজ্রালংকর্ণ বোদিন্দ্রদেবায়ভারাংকুন-এর দীর্ঘ, সমৃদ্ধিশালী ও শান্তিপূর্ণ রাজত্বকালের জন্য প্রার্থনা করে। ঐতিহ্যগতভাবে ঘনিষ্ঠ ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের এই দুই দেশের ইতিহাসের মূলে বিদেশি শাসনের হাত থেকে মুক্তির অভিন্ন সংগ্রাম এবং জাতীয় স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপট বিধৃত। মহাত্মা গান্ধী ও রাষ্ট্রপতি হো চি মিন-এর মতো মহান নেতা উপনিবেশবাদের বিরুদ্ধে বীরত্বপূর্ণ লড়াইয়ে জাতির নেতৃত্ব দিয়েছিলেন। ভারতে ২০০৭ সালে প্রধানমন্ত্রী নগুয়েন তান দং-এর সফরকালে আমরা কৌশলগত অংশীদারিত্বের চুক্তি স্বাক্ষর করেছিলাম। এই অংশীদারিত্ব ২০১৬ সাল এক পূর্ণাঙ্গ সামরিক অংশীদারিত্বে বিকশিত হয়েছে আমার ভিয়েতনাম সফরে। ভিয়েতনামের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক যোগাযোগের দ্বারা চিহ্নিত। ভারত ও ভিয়েতনামের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ১০ বছরে প্রায় ১০ গুণ বেড়েছে। প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যে সামারিক অংশীদারিত্বের এক তাৎপর্যপূর্ণ স্তম্ভ হিসাবে উঠে এসেছে। ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যে সহযোগিতার আরেক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হ’ল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। ভারত ও মায়ানমারের স্থলসীমান্তের দৈর্ঘ্য ১,৬০০ কিলোমিটারেরও বেশি আর দু’দেশের মধ্যে জলসীমান্তও বিদ্যমান। ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের প্রবহমান ধারায় আমাদের আত্মীয়তার গভীর অনুভূতি ও অভিন্ন বৌদ্ধ ঐতিহ্যের দ্বারা ইতিহাসগত অতীতের মতো এখনও এই দুটি দেশ আবদ্ধ। শোয়েডাগন প্যাগোডার জ্বাজ্বল্যমান স্তম্ভ এই সম্পর্ককে গৌরবজনকভাবে তুলে ধরে রেখেছে। বাগানে ভারতের আর্কিওলজিক্যাল সার্ভের সহযোগিতায় আনন্দ মন্দিরের পুনরুজ্জীবনের প্রয়াস এই অভিন্ন ঐতিহ্যেরই প্রতীক। ঔপনিবেশিক শাসনকালে আমাদের নেতৃবৃন্দের মধ্যে রাজনৈতিক বন্ধন ছিল, যা স্বাধীনতার অভিন্ন সংগ্রামের সময়ে আশা ও ঐক্যের এক মহান দৃষ্টান্ত রূপে প্রতিভাত হয়েছিল। গান্ধীজি বহুবার ইয়াঙ্গন সফর করেন। বালগঙ্গাধর টিলক’কে বহু বছর ইয়াঙ্গনে নির্বাসনে পাঠানো হয়েছিল। ভারতের স্বাধীনতার জন্য নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ঐতিহাসিক আহ্বান মায়ানমারে বহু মানুষকে উদ্দীপ্ত করেছিল। গত এক দশকে আমাদের বাণিজ্য দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। আমাদের বিনিয়োগ সম্পর্কও অত্যন্ত বলিষ্ঠ। ভারত ও মায়ানমারের সম্পর্কের ক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক সহযোগিতার এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এই সহায়তামূলক পোর্টফোলিওর আর্থিক মূল্য এখন ১৭৩ কোটি ডলারেরও বেশি। ভারতের স্বচ্ছ উন্নয়নমূলক সহযোগিতা মায়ানমারের জাতীয় অগ্রাধিকারগুলির সঙ্গে সমরৈখিক এবং আসিয়ান সংযোগের মহাপরিকল্পনার সঙ্গে তালমিল রেখে চলছে। সিঙ্গাপুর হ’ল এই অঞ্চলের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের ঐতিহ্যের জানালা, বর্তমানের প্রগতি আর ভবিষ্যতের সমৃদ্ধির প্রতীক। সিঙ্গাপুর ছিল ভারত ও আসিয়ানের মধ্যে এক সেতুবিশেষ। আজ এটি আমাদের পুবের প্রবেশদ্বার, আমাদের প্রধান অর্থনৈতিক সহযোগী এবং এক প্রধান বৈশ্বিক কৌশলগত অংশীদার, যে সম্পর্কের অহরহ অনুরণন ঘটে বিভিন্ন আঞ্চলিক ও বিশ্ব মঞ্চে আমাদের সদস্যভুক্তির ক্ষেত্রে। সিঙ্গাপুর ও ভারত এক কৌশলগত অংশীদারিত্বের অংশভাক। আমাদের রাজনৈতিক সম্পর্ক শুভেচ্ছা, উষ্ণতা এবং আস্থায় সম্পৃক্ত। আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্ক উভয়ের ক্ষেত্রেই বলিষ্ঠতমগুলির মধ্যে পড়ে। আমাদের অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব দুটি দেশের অগ্রাধিকারের প্রতিটি ক্ষেত্র জুড়ে রয়েছে। সিঙ্গাপুর হ’ল ভারতের অন্যতম প্রধান গন্তব্য এবং বিনিয়োগের উৎস। হাজার হাজার ভারতীয় কোম্পানি সিঙ্গাপুরেও পঞ্জিকৃত। ১৬টি ভারতীয় মহানগরীর সঙ্গে প্রতি সপ্তাহে সিঙ্গাপুরের ২৪০টিরও বেশি সরাসরি উড়ান রয়েছে। দু’মাসের সামান্য বেশি আগে ফিলিপিন্সে আমি অত্যন্ত সন্তোষজনক এক সফর সেরে এসেছি। আসিয়ান-ভারত, ইএএস ও সংক্রান্ত শীর্ষ বৈঠকগুলিতে যোগদান ছাড়াও আমার সুযোগ ঘটেছিল সেদেশের রাষ্ট্রপ্রধান দুতের্তের সঙ্গে সাক্ষাৎ করার আর আমাদের উষ্ণ ও সমস্যা বিহীন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে কিভাবে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায় সে বিষয়ে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা হয়েছিল। আমরা উভয় দেশই পরিষেবা ক্ষেত্রে শক্তিশালী আর প্রধান দেশগুলির মধ্যে উচ্চতমদের মধ্যে আমাদের উভয়ের বিকাশ হার পড়ে। আমাদের বাণিজ্য ও ব্যবসা সম্ভাবনা যথেষ্ট প্রতিশ্রুতিমান। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়ন আনা ও দুর্নীতির সঙ্গে লড়াই করার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি দুতের্তের অঙ্গীকারকে আমি প্রশংসা করি। এগুলি হ’ল সেইসব ক্ষেত্র, যেখানে দুটি দেশ এক সঙ্গে কাজ করতে পারে। সার্বজনীন পরিচয়পত্র, অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি, সকলের জন্য ব্যাঙ্কিং-এর সুযোগ করে দেওয়া, সরাসরি সুবিধা হস্তান্তরের ব্যবস্থা এবং নগদ বিহীন লেনদেনে উৎসাহ যোগানোর মতো ক্ষেত্রে আমাদের অভিজ্ঞতা ফিলিপিন্সের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পেরে আমরা খুশি। ফিলিপিন্স সরকারের আরেকটি অগ্রাধিকারমূলক এলাকা হ’ল সাশ্রয়ী ওষুধ সকলের জন্য প্রাপ্তির সুযোগ করে দেওয়া আর এক্ষেত্রেও আমরা অবদান রাখতে তৈরি। ভারত ও মালয়েশিয়ার দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য গত ১০ বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। ভারত ও মালয়েশিয়ার মধ্যে ২০১১ সাল থেকে দ্বিপাক্ষিক পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি রয়েছে। এই চুক্তিটি হ’ল নজির বিহীন, কেননা দুই দেশই পণ্যসামগ্রীর ব্যবসাগত ক্ষেত্রে আসিয়ানের চেয়েও বেশি অঙ্গীকার করেছে এবং পরিষেবাগত বাণিজ্যের ক্ষেত্রে ডব্ল্যুটিও প্লাস অফার বিনিময় করেছে। ভারত ও ব্রুনেই-এর মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য গত এক দশকে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়েছে। এদেশের উপ-রাষ্ট্রপতি ২০১৬’র ফেব্রুয়ারিতে ব্রুনেই সফর করেছিলেন। ভারত ও লাও পিডিআর-এর মধ্যে সম্পর্ক বহু ক্ষেত্রেই ব্যাপকভাবে সম্প্রসারিত। ভারত বিদ্যুৎ সংবহন ও কৃষি ক্ষেত্রে লাও পিডিআর-এ নানা প্রকল্পে সক্রিয়ভাবে যুক্ত। আজ ভারত ও লাও পিডিআর নানা ধরনের বহুপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক ফোরামে সহযোগিতা করে থাকে। পরিষেবাগত বাণিজ্যের প্রভূত সম্ভাবনা আমাদের রয়েছে। আসিয়ান-ভারত পরিষেবা ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত চুক্তির রূপায়ণ দু’দেশের পরিষেবাগত বাণিজ্যের বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে। ভারত মহাসাগরে মাত্র ৯০ নটিক্যাল মাইল দূরত্বে অবস্থিত ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে একই মানবসভ্যতার অংশভাগ হওয়ার দুই সহস্রাব্দেরও বেশি প্রাচীন এক ঐতিহ্য রয়েছে। বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য বা ভিন্নেকা তুঙ্গল ইকা দু’দেশের ভাগ করে নেওয়া সামাজিক মূল্যবোধ কাঠামোর এক প্রধান দিক। কৌশলগত অংশীদার হিসাবে আমাদের সহযোগিতা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা, সাংস্কৃতিক এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগের সমস্ত ক্ষেত্র জুড়ে প্রসারিত। আসিয়ানে আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার হ’ল ইন্দোনেশিয়া। ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য গত ১০ বছরে আড়াই গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ভারত ও কম্বোডিয়ার মধ্যে সনাতন ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের মূল রয়ে গেছে সভ্যতাগত সুপ্রাচীন বন্ধনের মধ্যে। আমাদের সুপ্রাচীন ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের গৌরবময় সাক্ষী এবং মহান প্রতীক হ’ল আংকোর ওয়াট মন্দিরের বিশাল স্থাপত্য। ভারত ১৯৮৬-১৯৯৩ – এর কঠিন সময়ে আংকোর ওয়াট মন্দিরের পুনরুজ্জীবন ও সংরক্ষণের কাজ সম্পাদন করে গর্বিত। এই মূল্যবান সহযোগিতাকে টা-প্রোম মন্দিরের সংরক্ষণের বর্তমান কাজেও সম্প্রসারিত করতে পেরে আমরা খুশি। খমের রুজ শাসনতন্ত্রের অবসানের পর ভারতই ১৯৮১ সালে প্রথম সেদেশের নতুন সরকারকে স্বীকৃতি দেয়। ১৯৯১ সালে প্যারিস শান্তি চুক্তি ও তা চূড়ান্ত করার কাজেও যুক্ত ছিল ভারত। এইসব ঐতিহাসিক বন্ধুত্বের সম্পর্ক উচ্চ পর্যায়ের নেতৃবৃন্দের নিয়মিত সফরের মাধ্যমে জোরদার হয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক সামর্থ্য নির্মাণ, মানবসম্পদ উন্নয়ন, উন্নয়নমূলক ও সামাজিক প্রকল্প, সাংস্কৃতিক বিনিময়, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, পর্যটন ও মানুষে মানুষে যোগাযোগের মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা দু’দেশের সহযোগিতাকে ছড়িয়ে দিয়েছি। আসিয়ানের দিক থেকে এবং নানা বৈশ্বিক মঞ্চে কম্বোডিয়া হ’ল এক গুরুত্বপূর্ণ মধ্যস্থতাকারী এবং ভারতের সমর্থনমূলক অংশীদার। ভারত কম্বোডিয়ার অর্থনৈতিক বিকাশের অংশীদার হয়ে থাকার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারবদ্ধ এবং দু’দেশের ঐতিহ্যপূর্ণ সম্পর্ক আরও গভীর করে তোলার আকাঙ্খা রাখে। এবং ভারত ও আসিয়ান আরও অনেক কিছু করছে। আসিয়ান নেতৃত্বের নানা প্রতিষ্ঠান যেমন – পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠক, এডিএমএম প্লাস (এশীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠক প্লাস) এবং এআরএফ (এশীয় আঞ্চলিক ফোরাম) আমাদের এই অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছে। ভারত আঞ্চলিক পূর্ণাঙ্গ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির এক উৎসাহী সদস্য হিসাবে ১৬ জন সদস্যের প্রত্যেকের জন্য পূর্ণাঙ্গ, সুষম ও ন্যায্য চুক্তি প্রার্থনা করে। অংশীদারিত্বের জোর ও বলিষ্ঠতা কেবলমাত্র সংখ্যার বিচারেই আসে না, সম্পর্কের গভীরতা থেকেও আসে। ভারত ও আসিয়ান-এর মধ্যে সম্পর্ক কোনও প্রতিযোগিতা ও দাবি মুক্ত। ভবিষ্যতের ক্ষেত্রে আমাদের অভিন্ন দর্শন রয়েছে অন্তর্ভুক্তি ও সংহতির অঙ্গীকারের ভিত্তিতে, আকার নিরপেক্ষভাবে সব দেশের সার্বভৌম সাম্যের প্রতি বিশ্বাস এবং বাণিজ্য ও যোগাযোগের অবাধ ও উদার সংযোগপথের প্রতি সমর্থনের মাধ্যমে। আসিয়ান-ভারত অংশীদারিত্ব বেড়েই চলবে। জনসংখ্যা, গতিশীলতা ও চাহিদা বৃদ্ধির দান এবং দ্রুত পরিণত হয়ে ওঠা অর্থনীতির মাধ্যমে – ভারত ও আসিয়ান এক বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তুলবে। যোগাযোগ বাড়বে এবং ব্যবসাও প্রসারিত হবে। ভারতে সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়বাদের যুগে আমাদের রাজ্যগুলিও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে উৎপাদনশীল সহযোগিতা গড়ে তুলছে। ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল পুনরুজ্জীবনের পথে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সঙ্গে যোগাযোগ এর উন্নতিকে ত্বরান্বিত করবে। বিনিময়ে এক যুক্ত উত্তর-পূর্বাঞ্চল আমাদের স্বপ্নের আসিয়ান-ভারত বন্ধনের সেতু হয়ে দাঁড়াবে। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে আমি চারটি বার্ষিক আসিয়ান-ভারত শীর্ষ বৈঠক এবং পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠকে যোগ দিয়েছি। এগুলি এতদঅঞ্চলকে আসিয়ান ঐক্য, কেন্দ্রীয়তা এবং নেতৃত্বের মাধ্যমে উপযুক্ত রূপদানে আমার আস্থাকেই সুদৃঢ় করেছে। এই বছরটি নানা মাইলফলকের। ভারত গত বছর ৭০ পূর্ণ করেছে। আসিয়ান ৫০ বছরের সোনালী মাইলফলকে উপনীত। আমরা প্রত্যেকেই আমাদের ভবিষ্যতের দিকে আশা নিয়ে এবং আমাদের অংশীদারিত্বের দিকে প্রত্যয় নিয়ে তাকাতে পারি। ৭০-এ উপনীত ভারত হ’ল তার যুবশক্তির চেতনা, উদ্যোগ ও অন্তর্নিহিত শক্তির দ্যোতক। বিশ্বে সবচেয়ে দ্রুত বিকাশশীল প্রধান অর্থনীতি হিসাবে ভারত বৈশ্বিক সুযোগের নতুন সীমানা এবং বৈশ্বিক অর্থনীতির স্থিতিশীলতার নোঙর হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রত্যেকটি দিন কাটছে আর ভারতে ব্যবসা করা ততই সহজ ও স্বচ্ছন্দ হয়ে উঠছে। আমাদের প্রতিবেশী ও বন্ধুদের মতোই আসিয়ান দেশগুলিও নবভারতের রূপান্তরের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠবে বলে আমার আশা। আসিয়ানের নিজস্ব উন্নতিকে আমরা প্রশংসা করি। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া যখন পৈশাচিক যুদ্ধের রঙ্গ মঞ্চ হয়ে উঠেছিল আর অনিশ্চয়তার দেশসমূহের অঞ্চল হিসাবে পরিচিত ছিল, সেই সময়ে জন্ম নিয়ে আসিয়ান এক অভিন্ন উদ্দেশ্য ও ভাগ করে নেওয়া ভবিষ্যতের লক্ষ্যের পেছনে ১০টি রাষ্ট্রকে ঐক্যবদ্ধ করেছিল। উচ্চতর আকাঙ্খার পথ অনুসরণ করা এবং আমাদের সময়ের নানা চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার ক্ষমতা আমাদের আছে : পরিকাঠামো ও নগরায়ন থেকে ঘুরে দাঁড়ানো কৃষি ও এক স্বাস্থ্যবান গ্রহ। আমরা ডিজিটাল প্রযুক্তি, উদ্ভাবন এবং সংযোগ ক্ষমতাকেও কাজে লাগাতে পারি নজির বিহীন গতি ও মাপে জীবনটাকে পাল্টে ফেলার চেষ্টায়। আশার ভবিষ্যতের জন্য প্রয়োজন শান্তির সুদৃঢ় বলিষ্ঠতা। এ হ’ল বদলের যুগ, বিপর্যয় ও পরিবর্তন যা আসে, তা ইতিহাসে বিরল। আসিয়ান ও ভারত উভয়েরই সামনে রয়েছে অফুরান সুযোগ – বিরাট দায়িত্ব – আমাদের সমকালের অনিশ্চয়তা ও উচ্চাবচতার মধ্য দিয়ে আমাদের অঞ্চল ও গোটা বিশ্বের জন্য স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ ভবিষ্যতের রূপরেখা তৈরির। বিশ্বপালক রবির প্রথম রেখা এবং সুযোগের রশ্মিগুচ্ছের দর্শন পেতে ভারতীয়রা সবসময়েই পুবের দিকে তাকিয়ে থেকেছেন। এখন, ঠিক আগের মতোই, সেই পুব অথবা ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল ভারতের ভবিষ্যৎ এবং আমাদের অভিন্ন ভাগ্যের ক্ষেত্রে অনিবার্য ভূমিকা নেবে। আসিয়ান-ভারত অংশীদারিত্ব উভয় ক্ষেত্রেই এক সংজ্ঞামূলক ভূমিকা পালন করবে। রিয়াধে এল অ্যান্ড টি সংস্থার কর্মীদের আবাসন চত্বরটি আজ ঘুরে দেখেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রিয়াধ মেট্রোর একটি অংশের নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে এল অ্যান্ড টি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে রিয়াধ মেট্রোও সংশ্লিষ্ট ভারতীয় কর্মীদের কথা স্মরণ করবে, স্মৃতিচারণ করবে মেট্রোর নির্মাণে তাঁদের অবদান সম্পর্কে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিদেশে কর্মরত ভারতীয় কর্মীদের আত্মীয়-পরিজনদের কাছ থেকে যে সমস্ত চিঠিপত্র তিনি পেয়ে থাকেনতার মাধ্যমেই সংশ্লিষ্ট কর্মীদের অবস্থা সম্পর্কে অবহিত হন তিনি। সিসকো-র চেয়ারম্যান মিঃ জন চেম্বার্স আজ সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। আজি থেকে খিজাদিয়া পর্যন্ত ৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ পাইপলাইন সহ একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পেরও তিনি উদ্বোধন করেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী গত কয়েক বছর ধরে গুজরাটের জল সমস্যা সমাধানে রাজ্য সরকারের সদিচ্ছা ও কঠোর পরিশ্রমের কথা তুলে ধরেন। তিনি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের নাগরিকদের উদ্দেশে প্রত্যেক জলবিন্দু সঞ্চয় করার জন্য আহ্বান জানান। গুজরাটে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই রাজ্যে গত কয়েক বছরে যেসব হাসপাতাল তৈরি হয়েছে, তার ফলে দরিদ্র মানুষেরা দারুণভাবে উপকৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচি রূপায়ণের ফলে দরিদ্র মানুষের জন্য উচ্চমানের সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবা নিশ্চিত হবে। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় সরকার যেসব দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়নমূলক প্রকল্প হাতে নিয়েছে তার কথা প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ নিধি কর্মসূচি এই ধরণের এক দীর্ঘমেয়াদি প্রকল্প, যা সার্বিক পরিকল্পনার মাধ্যমে কৃষকদের কল্যাণসাধন করবে। ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পক্ষেত্রের উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, সহজে ঋণের যোগান এবং জনমুখী জিএসটি ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে যুবসম্প্রদায়ের শিল্পোদ্যোগীরা উপকৃত হবেন। তিনি বলেন যে, সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের ফলে সহজে ব্যবসার সূচকে ভারতের অবস্থান আরও ওপরে উঠবে। দেশের সশস্ত্র বাহিনীর জওয়ানদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আমাদের সেনাকর্মীদের জন্য সমগ্র জাতি গর্ব অনুভব করে। তিনি বলেন, সন্ত্রাসবাদকে আগামীদিনে সম্পূর্ণ মুছে ফেলা হবে। যখনই আমি সাপুতারা সফরে গিয়েছি, তাঁর সঙ্গে কথাবার্তা ও আলাপচারিতায় মিলিত হয়েছি যাআমি এখনও স্মরণ করতে পারি। “ছত্রপতিশিবাজী মহারাজ জয়ন্তীতে প্রণাম জানাই। তাঁর মতো একজন বীর ও মহানুভব ব্যক্তি এদেশেজন্মগ্রহণ করায় ভারত গর্বিত। শিবাজী মহারাজসাধারণ মানুষের কল্যাণকে সমস্ত কিছুর ঊর্ধ্বে রাখতেন। তিনি ছিলেন ব্যতিক্রমীপ্রশাসনিক দক্ষতাসম্পন্ন এক আদর্শ শাসক। সম্প্রতি আরবসাগরের কূলে শিবাজী মহারাজের মূর্তি প্রতিষ্ঠার এক কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার সৌভাগ্যআমার হয়েছিল। কলম্বোর আন্তর্জাতিক বন্দরনায়েক স্মারক সম্মেলন কক্ষে বিশ্বভেসক দিবস উদযাপনের সূচনা পর্বে ভাষণ দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। পাঁচটিস্তোত্র উচ্চারণের মধ্য দিয়ে সূচনা হয় বিশেষ অনুষ্ঠানের। স্বাগত ভাষণ দেনশ্রীলঙ্কার বুদ্ধ শাসন ও ন্যায় দপ্তরের মন্ত্রী মিঃ বিজয়দাসা রাজপক্ষে। “শ্রীলঙ্কায়আপনি আমাদেরই একজন” – এভাবেই তিনি সম্ভাষণ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। শ্রীলঙ্কারপ্রেসিডেন্ট মৈত্রিপালা সিরিসেনা তাঁর ভাষণে বলেন যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদীর উপস্থিতি তাঁদের সকলের পক্ষেই এক সৌভাগ্যের বিষয়। শান্তি ও মৈত্রীর বার্তা তিনি বহন করেএনেছেন ভারত থেকে। এদিনপ্রধানমন্ত্রীর ভাষণের অংশ বিশেষ উদ্ধৃত করা হল এখানে : রাজকুমারসিদ্ধার্থ যেখানে হয়ে উঠেছিলেন বুদ্ধ, ভারতের সেই বুদ্ধগয়া হল বৌদ্ধ বিশ্বের একপূণ্যভূমি। বারাণসীতেভগবান বুদ্ধের প্রথম বাণী ‘ধর্মচক্র’কে সচল ও গতিশীল করে তোলে। আমাদেরমূল জাতীয় প্রতীকটির সৃষ্টি হয়েছে বৌদ্ধ ধর্মের অনুপ্রেরণায়। আমাদেরদর্শন, সংস্কৃতি এবং শাসন ব্যবস্থায় বৌদ্ধ ধর্মের নীতিগুলি স্থান পেয়েছে বিশেষভাবে । বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধ চর্চার ঐশ্বরিক সৌরভ ভারত থেকে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বব্যাপী। সম্রাটঅশোকের সন্তান মহেন্দ্র ও সঙ্ঘমিত্রা ধর্মদূত রূপে পদার্পণ করেছিলেন ভারত থেকেশ্রীলঙ্কায়। বৌদ্ধশিক্ষা ও আদর্শের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্রগুলির অন্যতম হয়ে ওঠার গৌরবঅর্জন করেছে শ্রীলঙ্কা। আর এইভাবেই তাঁরা আবারআমাদের ফিরিয়ে নিয়ে গেছেন সেই মূল শিকড়ে। বৌদ্ধঐতিহ্যের গুরুত্বপূর্ণ নিদর্শনগুলি সংরক্ষণের জন্য শ্রীলঙ্কার কাছে কৃতজ্ঞতার ঋণেআবদ্ধ সমগ্র বিশ্ববাসী। বৌদ্ধধর্ম ও বৌদ্ধ চর্চার মূল ঐতিহ্য এখনও রয়ে গেছে অক্ষত। আমার তামিলভাই-বোনেরাও সুযোগ পাবেন কাশী বিশ্বনাথের নিজভূমি বারাণসী দর্শন করার। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতার সম্পর্ককে আরওএগিয়ে নিয়ে যাওয়ার এ এক অনন্য সুযোগ। আমাদেরমৈত্রী সম্পর্কের সাফল্যের একটি দিকচিহ্ন হল শ্রীলঙ্কার সফল অগ্রগতি। এইদেশের ভাই-বোনদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করে তোলার কাজে সাহায্য করতে আমরাপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদেরউন্নয়ন সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করে তুলতে অর্থনৈতিক অগ্রগতির ইতিবাচক পরিবর্তনেরলক্ষ্যে নিরন্তরভাবেই আমরা বিনিয়োগ করে যাব। আমাদেরমূল শক্তি নিহিত রয়েছে পারস্পরিক জ্ঞান, দক্ষতা ও ক্ষমতা এবং সমৃদ্ধি বিনিময়েরমধ্যে। বাণিজ্যও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা ইতিমধ্যেই হয়ে উঠেছি পরস্পরের বিশেষ অংশীদার। আমরাবিশ্বাস করি যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবং চিন্তাভাবনাকে যদি আমরা সীমান্তঅতিক্রম করে একে অপরের দেশে পৌঁছে দিতে পারি, তাতে লাভবান হব আমরা দুটি দেশই। ভারতেরদ্রুত অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি প্রভূত কল্যাণসাধন করবে সমগ্র অঞ্চলেরই এবং বিশেষভাবেশ্রীলঙ্কার। পরিকাঠামোও যোগাযোগ, পরিবহণ ও জ্বালানি – প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা নিবিড় করে তুলব আমাদেরসহযোগিতাকে। কৃষি,শিক্ষা, স্বাস্থ্য, পুনর্বাসন, পরিবহণ, বিদ্যুৎ, সংস্কৃতি, জল, আশ্রয়, ক্রীড়া এবংমানবসম্পদ সহ মানব প্রচেষ্টার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রসারিত আমাদের উন্নয়নসহযোগিতা। বর্তমানে,শ্রীলঙ্কার সঙ্গে ভারতের উন্নয়ন সহযোগিতার মাত্রা উন্নীত হয়েছে ২.৬ বিলিয়ন মার্কিনডলারে । আমাদেরমূল লক্ষ্য হল এক শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে তোলার কাজেশ্রীলঙ্কা ও তার জনসাধারণকে সর্বতোভাবে সাহায্য ও সমর্থন করে যাওয়া। কারণ,শ্রীলঙ্কার অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিক কল্যাণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ১২৫ কোটিভারতবাসীর কল্যাণ। ভারতমহাসাগর অঞ্চলে স্থল ও জলসীমা সর্বত্রই আমাদের দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থার নিরাপত্তাএকে অপরের ওপর নির্ভরশীল এবং তাকে কোনভাবেই বিচ্ছিন্ন করা যায় না। প্রেসিডেন্টসিরিসেনা এবং প্রধানমন্ত্রী বিক্রমসিঙ্ঘের সঙ্গে আমার আলোচনা ও মতবিনিময়ের মধ্যদিয়ে এটাই প্রতিষ্ঠিত হয়েছে যে আমাদের সাধারণ লক্ষ্যপূরণে পারস্পরিক সহযোগিতাপ্রসারের সদিচ্ছা রয়েছে আমাদের দুটি দেশেরই। সমাজব্যবস্থায় সম্প্রীতি ও অগ্রগতির বিষয়টি যখন আপনারা চিন্তা করবেন, তখনই এই জাতিগঠনের প্রচেষ্টায় আপনারা সঙ্গে পাবেন ভারতকে। বিভিন্নজাতিকে যুক্ত করেছে ভগবান বুদ্ধের বাণীর এই প্রাসঙ্গিকতা। ভগবানবুদ্ধের দেশ থেকে বৌদ্ধ চর্চার যে প্রসার ঘটেছে বিশ্বের সর্বত্র, তার জন্য গর্বিতদক্ষিণ, মধ্য, দক্ষিণ-পূর্ব এবং পূর্ব এশিয়ার সবক’টি জাতিই। ভেসকদিবস উদযাপনের বিষয় হিসেবে যা আজ সর্বজন স্বীকৃত সেই সামাজিক ন্যায় ও নিরন্তরবিশ্ব শান্তির মধ্যে প্রতিফলিত হয় ভগবান বুদ্ধেরই শিক্ষাদর্শ। বিভিন্নসম্প্রদায়ের ভেতরে ও বাইরে সংঘাত ও সংঘর্ষের পরিস্থিতিতে সামাজিক ন্যায়ের গুরুত্বআজ আরও বেশি করে অনুভূত হয়। সংঘাতেরমূল কারণ হল ‘তানহা’ বা তৃষ্ণা যার আসল কারণ হল লোভ। লোভবা লিপ্সা মানবজাতির ওপর এতটাই প্রভাব বিস্তার করেছে যে প্রকৃতিগত স্বাভাবিক অবস্থানথেকে তা আজ অনেকটাই সরে এসেছে। বিশ্বব্যাপীহিংসা যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে একমাত্র বুদ্ধের শান্তির বাণীই তার যোগ্য প্রত্যুত্তরহয়ে উঠতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। নিষ্ক্রিয়শান্তির কোন বাণী নয়, বরং সক্রিয় শান্তি প্রচেষ্টার মাধ্যমেই গড়ে উঠতে পারেআলোচনা, সম্প্রীতি ও ন্যায়ের পরিবেশ। ভগবান বুদ্ধের ভাষায় যা করুণা (সহমর্মিতা) ওপ্রজ্ঞা (বিশেষ জ্ঞান)। ভগবানবুদ্ধ বলেছেন, “শান্তির থেকে বড় আশীর্বাদ আর কিছু হতে পারে না।” পরিশেষে,এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সুযোগ লাভের জন্য সকলকে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, মহিলা বিশ্ব বক্সিং প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ পদক জয়ের জন্য মেরি কম-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতীয় ক্রীড়া জগতের জন্য এটি একটি গর্বের মুহূর্ত। মহিলা বিশ্ব বক্সিং প্রতিযোগিতায় সোনা জয়ের জন্য মেরি কম-কে অভিনন্দন। ক্রীড়া জগতে যে নৈপুণ্য ও দক্ষতার পরিচয় তিনি রাখছেন এবং আন্তর্জাতিক স্তরে যে সাফল্য অর্জন করছেন, তা বিশেষভাবে অনুপ্রেরণা দেয়। মন্ত্রিসভার নতুন সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে পেনশন খাতে সরকারের বার্ষিক খরচবৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়াবে ১,৭৬,০৭১ কোটি টাকা। এর আগে ২০১৬-র জুন মাসে বেতন কমিশনেরসুপারিশ অনুমোদনের সময় সরকারের বেতন ও পেনশন খাতে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের জন্যঅতিরিক্ত সংস্থান ধরা হয়েছিল ৮৪,৯৩৩ কোটি টাকা। এর মধ্যে, ২০১৫-১৬ অর্থ বছরেরদু’মাসের বকেয়া বেতন ও পেনশনের পরিমাণও ধরা হয়েছিল। “রমজান মাসের সূচনায় জানাই আমার অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার (১৯শে অক্টোবর) মহারাষ্ট্রের শিরডি সফর করেন। এক জনসভায় তিনি শ্রী সাইবাবা সংস্থান ট্রাস্টের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস উপলক্ষে ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। শ্রী সাইবাবা সমাধির শতবার্ষিকী উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে তিনি একটি রুপোর মুদ্রা আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন। শ্রী মোদী মহারাষ্ট্রে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ আবাস যোজনার সুফলভোগীদের গৃহপ্রবেশ উপলক্ষে বাড়ির চাবি তাঁদের হাতে তুলে দেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন জেলা যেমন – সাতারা, লাতুর, নান্দুবার, আমরাবতি, থানে, সোলাপুর ও নাগপুর জেলার সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দশেরা উপলক্ষে সমস্ত ভারতীয়কে শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, পবিত্র দশেরা উৎসবের সময় সাধারণ মানুষের মধ্য থেকে তিনি দেশের আরও উন্নতির জন্য কাজ করতে শক্তি ও নতুন করে সাহস পাচ্ছেন। সমাজের প্রতি শ্রী সাইবাবার অবদানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর শিক্ষা ও আদর্শ এক মজবুত অখণ্ড সমাজ গঠনের এবং ভালোবাসা দিয়ে মানবজাতির সেবা করার প্রেরণা যোগায়। শিরডিকে সর্বদাই জনসেবার প্রতীক হিসেবে গণ্য করা হয়। সাইবাবার দেখানো পথ শ্রী সাইবাবা সংস্থান ট্রাস্ট অনুসরণ করে চলেছে বলে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। শিক্ষার মাধ্যমে সমাজের ক্ষমতায়ন এবং আধ্যাত্মিক মতবাদের সাহায্যে চিন্তাভাবনার পরিবর্তনের ক্ষেত্রে এই ট্রাস্ট্রের অবদানেরও তিনি প্রশংসা করেন। দশেরা উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (গ্রামীণ) আওতায় ২ লক্ষেরও বেশি সুফলভোগীর হাতে নতুন বাড়ি তুলে দিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এটি একটি বড় পদক্ষেপ। ২০২২ নাগাদ ‘সকলের নিজস্ব বাড়ি’ সুনিশ্চিত করার যে উদ্যোগ সরকার নিয়েছে, সে প্রসঙ্গ উত্থাপন করে শ্রী মোদী বলেন, বিগত চার বছরে সরকার ১ কোটি ২৫ লক্ষেরও বেশি বাড়ি তৈরি করেছে। তিনি বলেন, সরকারের লক্ষ্য কেবল উৎকৃষ্ট মানের বাড়ি তৈরি করাই নয়, সেইসঙ্গে প্রতিটি বাড়িতে শৌচাগার, গ্যাস ও বিদ্যুৎ সংযোগ সুনিশ্চিত করা। জনসভায় তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী প্রকাশ্য স্থানে শৌচকর্ম বর্জিত রাজ্যে পরিণত করার জন্য মহারাষ্ট্রের মানুষকে অভিনন্দন জানান। স্বচ্ছ ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে মহারাষ্ট্র সরকার যে সমস্ত উদ্যোগ নিয়েছে তিনি সেগুলিরও প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এখনও পর্যন্ত এই প্রকল্পে প্রায় ১ লক্ষ মানুষ উপকৃত হয়েছেন। এমনকি, এই প্রকল্পের মাধ্যমে আধুনিক চিকিৎসা পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হচ্ছে। মহারাষ্ট্রে খরাজনিত পরিস্থিতির মোকাবিলায় সরকারের গৃহীত উদ্যোগগুলির কথাও শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। বি.আর.আম্বেদকর, জ্যোতিরাও ফুলে এবং ছত্রপতি শিবাজির শিক্ষা ও আদর্শের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে মহান এই ব্যক্তিত্বদের মহৎ আদর্শ অনুসরণ করে এক মজবুত অখণ্ড সমাজ গঠনের লক্ষ্যে কাজ করার পরামর্শ দেন। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ এবং ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’-এর উদ্দেশ্যগুলি অর্জনের লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার জন্য তিনি সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান। এর আগে, প্রধানমন্ত্রী শ্রী সাইবাবা সমাধি মন্দির প্রাঙ্গণ ঘুরে দেখেন এবং সেখানে প্রার্থনা সভায় অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্য প্রতিষ্ঠা বিদস উপলক্ষে ছত্তিশগড়ের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘প্রাকৃতিক শোভায় সমৃদ্ধ ও অসাধারণ মানুষের বাসভূমি ছত্তিশগড়ের অগ্রগতির উল্লেখ করার মতো। মাত্র গত মাসেই বর্ডার-গাভাসকারট্রফির উত্তেজক ও চাঞ্চল্যকর সমাপ্তি আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। ২০১৪ সালেঅস্ট্রেলিয়ার সংসদে ভাষণদানকালে আমি প্রবাদপ্রতিম ব্র্যাডম্যান ও তেন্ডুলকরের কথাউল্লেখ করেছিলাম। বর্তমানে, ভারতের বিরাট কোহলি এবং অস্ট্রেলিয়ার স্টিভেন স্মিথতৈরি করছেন এক একটি তরুণ ক্রিকেট ব্রিগেড। অস্ট্রেলিয়ার অধিনায়ক স্টিভেন স্মিথেরব্যাটিং-এর মতোই আপনার এই ভারত সফর সফল হবে বলে আমি মনে করি। জি-২০শীর্ষ সম্মেলনের পাশাপাশি, আমাদের পারস্পরিক বৈঠকগুলির কথা আমি পুরোপুরিভাবে স্মরণকরতে পারি। দু’দেশের মিলিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য প্রতিফলন ঘটেছে ঐ বৈঠকগুলিতে। আমাদেরকর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রগুলিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে যে বিশেষ আগ্রহ আপনিপ্রকাশ করেছেন, আমি তারও বিশেষ প্রশংসা করি। আমরা দৃঢ়ভাবেই এগিয়ে চলেছি আমাদেরসহযোগিতার এই যাত্রাপথে। আপনার নেতৃত্বে দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক নতুন মাইলফলকরচনা করতে পেরেছে। কৌশলগত অংশীদারিত্বের নতুন নতুন অগ্রাধিকারকে বাস্তব রূপ দিতেআপনার এই সফর এক বিশেষ সুযোগ এনে দিয়েছে আমাদের সামনে। আমাদেরঐতিহাসিক সম্পর্কের ধারাকে স্মরণ করিয়ে দেয় ভারত মহাসাগরের বহমান জলরাশি। আমাদেরদুটি দেশের ভাগ্যকে পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করার ক্ষেত্রে এক বিশেষ ভূমিকা পালনকরেছে এই মহাসাগর। আমাদের দুটি জাতিরই রয়েছে গণতন্ত্রের নীতি ও মূল্যবোধ এবং আইনেরশাসনের প্রতি এক মিলিত আনুগত্য। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারতের ১২৫ কোটিজনসাধারণের বলিষ্ঠ আকাঙ্ক্ষা এবং অস্ট্রেলিয়ার দক্ষতা ও ক্ষমতার মিলন ও সমন্বয়আমাদের দু’দেশের সম্পর্কে এক নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে। আজকেরবৈঠকে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সবক’টি ক্ষেত্র নিয়েই আলোচনা ও মতবিনিময় করেছিআমি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। তবে আমাদের এই আলোচনা যে ডিআরএস পর্যালোচনার বিষয়ীভূত নয়, তাতে আমিবিশেষভাবে আনন্দিত। দু’দেশেরসমাজ ব্যবস্থার সমৃদ্ধিতে শিক্ষা ও উদ্ভাবনের মূল্যকে স্বীকৃতি দিয়েছে ভারত ওঅস্ট্রেলিয়া দুটি দেশই। আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই যে খুব স্বাভাবিকভাবেই শিক্ষা ও গবেষণারক্ষেত্রে সহযোগিতা আমাদের পারস্পরিক কর্মপ্রচেষ্টার এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকারকরে রয়েছে। ভিটামিন-এ সমৃদ্ধ কলা উৎপাদনের ক্ষেত্রে আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা বর্তমানেরয়েছে এক পরীক্ষামূলক পর্যায়ে। আরও বেশি পুষ্টিকর এবং ভালো জাতের ডাল উৎপাদনেরলক্ষ্যে দু’দেশের বিজ্ঞানীরা পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করে চলেছেন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকালে দু’দেশের বিভিন্নপ্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। আমাদের এই লক্ষ্যের সঙ্গে অস্ট্রেলিয়ারবিশ্ববিদ্যালয়গুলি কিভাবে যুক্ত হতে পারে সে বিষয়ে উপায় অনুসন্ধানের জন্য আমি কথাবলেছি প্রধানমন্ত্রী টার্নবুলের সঙ্গে। আমাদেরঅর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি প্রচেষ্টাকে যে পরিবেশ-অনুকূল করে তোলা প্রয়োজন সেবিষয়ে সহমত জ্ঞাপন করেছি আমি এবং মাননীয় প্রধানমন্ত্রী। আমরা দু’জনে বিশেষভাবেআনন্দিত এই কারণে যে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি সহ অন্যান্য শক্তি ক্ষেত্রেও আমাদেরআলোচনা ও সহযোগিতার পরিধি আজ ক্রমপ্রসারমান। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতায় যোগদানের যেসিদ্ধান্ত অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী গ্রহণ করেছেন, সেজন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদজানাই। অস্ট্রেলিয়ার সংসদে সমর্থন ও অনুমোদনের পর ভারতে ইউরেনিয়াম সরবরাহেঅস্ট্রেলিয়া এখন প্রস্তুত। মাননীয়প্রধানমন্ত্রী এবং আমি দু’জনেই স্বীকার করি যে আমাদের দুটি দেশেরই ভবিষ্যৎ ভারত-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চলের শান্তি ও স্থিতিশীলতার সঙ্গে সুগভীরভাবে সম্পৃক্ত। এই কারণে একসুরক্ষিত ও নিয়ম-নীতি পরিচালিত ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল গড়ে তুলতে আমরাদু’জনেই সহমত ব্যক্ত করেছি। বর্তমান বিশ্বে প্রতিটি জাতিই একে অপরের সঙ্গে যুক্ত।এই পরিস্থিতিতে সন্ত্রাস ও সাইবার নিরাপত্তার মতো চ্যালেঞ্জগুলি কোন দেশ বাঅঞ্চলের গণ্ডির মধ্যে আর সীমাবদ্ধ নেই। সুতরাং, এই পরিস্থিতির মোকাবিলায় প্রয়োজনএক বিশ্ব প্রচেষ্টা ও প্রকৌশল গড়ে তুলে সমাধানের পথ অন্বেষণ করা। আঞ্চলিক তথাআন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর জ্ঞান ও দূরদৃষ্টি আমাদের সাধারণউদ্বেগের বিষয়গুলিতে সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক নতুন মাত্রা এনে দিয়েছে। সন্ত্রাস বিরোধী এবং আন্তর্জাতিক অপরাধ প্রতিরোধী দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কবর্তমানে রয়েছে বেশ অনুকূল পরিস্থিতিতে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর এই সফরকালেনিরাপত্তা সহযোগিতা সম্পর্কিত একটি মউ-ও আমরা সম্পাদন করতে পেরেছি। শান্তি,সমৃদ্ধি এবং আঞ্চলিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে আঞ্চলিক পর্যায়ে সংগঠন গড়ে তোলারপ্রয়োজনীয়তাও আমরা স্বীকার করে নিয়েছি। এই কারণে, পূর্ব এশিয়া শীর্ষ সম্মেলন এবংভারত মহসাগর অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপনে সক্রিয়ভাবেইকাজ করে যাব আমরা যাতে আমাদের সাধারণ স্বার্থগুলির সুরক্ষা নিশ্চিত করা যায়। আমাদেরঅংশীদারিত্বের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ হল দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থারনিবিড় বন্ধন। ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রায় ৫ লক্ষ মানুষের বসবাস অস্ট্রেলিয়ায়। তাঁদেরসমৃদ্ধি এবং উজ্জ্বল সংস্কৃতি আমাদের এই সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও নিবিড় করেতুলেছে। গত বছর অস্ট্রেলিয়ার বহু শহরে সাফল্যের সঙ্গেই অনুষ্ঠিত হয়েছে‘কনফ্লুয়েন্স’ নামের ভারতোৎসব। এর উদ্যোগ-আয়োজনে অস্ট্রেলীয় সরকার সর্বতোভাবেসাহায্য ও সমর্থন করার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে। সাম্প্রতিকবছরগুলিতে ভারত ও অস্ট্রেলিয়া দুটি দেশই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বহু গুরুত্বপূর্ণক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে গেছে। আগামী মাস এবং বছরগুলিতেও এই দুটি জাতির সামনে রয়েছেপ্রতিশ্রুতি, সঙ্কল্প ও সম্ভাবনা। দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থার নিরাপত্তা ও কল্যাণের স্বার্থে আমাদের এই বলিষ্ঠ ওনিবিড় কৌশলগত অংশীদারিত্বের গুরুত্ব অনস্বীকার্য। একইসঙ্গে, তা এই অঞ্চলের শান্তি,স্থিতিশীলতা ও নিরাপত্তার পক্ষেও যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। আপনাদেরসকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ‘মন কি বাত’-এর সেই যাত্রার আজ ৫০-তম পর্ব পূর্ণ হলো। এবারে যতো চিঠি ও ফোন এসেছে তার বেশিরভাগই এই ৫০-তম সংস্করণ প্রসঙ্গেই বলেছে। ‘মাই গভ’ অ্যাপের মাধ্যমে দিল্লির অংশুকুমার, কমলকুমার, পাটনা থেকে বিকাশ যাদব আবার একই ভাবে ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’-এ দিল্লির মণিকা জৈন, পশ্চিমবঙ্গের বর্ধমান থেকে প্রসেনজিত সরকার, নাগপুরের সঙ্গীতা শাস্ত্রী — এঁরা প্রত্যেকেই প্রায় এক রকম প্রশ্ন পাঠিয়েছেন। এঁদের বক্তব্য সাধারণ মানুষ আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করেন টেকনোলজির নানান সোস্যাল মিডিয়া অ্যাপের মাধ্যমে কিন্তু আপনি জনসাধারনের সঙ্গে যোগাযোগ করার জন্য রেডিও মাধ্যম বেছে নিলেন কেন? — এই প্রশ্ন খুবই স্বাভাবিক। আজকের যুগে মানুষ যখন রেডিও-কে প্রায় ভুলতে বসেছিল, সেখানে মোদী কেন রেডিও-কে ফিরিয়ে আনল? মে মাসের সন্ধেবেলা আমি কোনও পাহাড়ী অঞ্চলে কাজ করতে যাচ্ছি। হিমাচলের ঠাণ্ডায় রাস্তার ধারে একটা চায়ের দোকানে চা খেতে দাঁড়িয়ে চা চাইলাম। এবার দোকানী বললেন, এই নিন রেডিও শুনুন। রেডিওয় শুনলাম, সেই বোমা ফাটানো নিয়ে আলোচনা চলছে। দোকানী জানালো প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারি বাজপেয়ীজী সেই বোমা ফাটানোর, পরমাণু বোমার পরীক্ষার ঐতিহাসিক গুরুত্ব, সেই দিনটির তাৎপর্য নিয়ে রেডিওতে বলেছেন, তিনি শুনেছেন। রেডিওর কম্যুনিকেশন রিচ এবং তার সুদূরপ্রসারী প্রভাবের কথা আমি সেই থেকে ভেবে চলেছি। এরপর যখন আমি প্রধানমন্ত্রী হলাম সব থেকে শক্তিশালী সংযোগ মাধ্যমের সাহায্য নেবো এটাই স্বাভাবিক। ২০১৪-র মে মাস থেকে যখন আমি প্রধান সেবক-এর দায়িত্ব পালন করা শুরু করলাম আমার মনে হয়েছিল, আমাদের দেশের একতা, আমাদের গৌরবময় ইতিহাস, শৌর্য, বৈচিত্র্য, সাংস্কৃতিক বিবিধতা, মানুষের নানান কর্মযজ্ঞ, তার পুরুষকার, আবেগ, ত্যাগ, তপস্যা — ভারতের এই কাহিনিকে সারা দেশের সমস্ত মানুষের কাছে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার। দূর দূর গ্রাম থেকে মেট্রো শহরগুলিতে, কিষাণ থেকে তরুণ প্রফেশন্যাল সব্বার কাছে পৌঁছে দিতে হবে দেশের এই সব কথা — এবং এভাবেই ‘মন কি বাত’ করা শুরু হয়েছিল। প্রতি মাসে লাখ খানেক চিঠি পড়তে পড়তে, ফোন কল শুনতে শুনতে, বিভিন্ন অ্যাপে আসা নানান কথা জানতে জানতে এবং সেগুলি এক সঙ্গে মিলিয়ে, আমার নিজের নানান হাল্কা মজার কথা বলতে বলতে ৫০-তম এপিসোডে পৌঁছে গেছি। ৫০-তম এপিসোডের যাত্রা আমরা সব্বাই মিলে সেরে ফেলেছি। ‘মন কি বাত’ নিয়ে আকাশবাণী একটা সমীক্ষা করেছে। সেই সমীক্ষার ফলাফল খুবই উৎসাহব্যঞ্জক। সার্ভে থেকে জানা যাচ্ছে যে শ্রোতারা ‘মন কি বাত’ শুনে আসছেন তাঁদের মধ্যে সত্তর শতাংশ মানুষ ‘মন কি বাত’-এর প্রত্যেকটা এপিসোডই শুনেছেন। বেশিরভাগ মানুষের ধারণা ‘মন কি বাত’ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের মধ্যে ইতিবাচক চিন্তা-ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে। এই বিষয়টি আমাদের দেশবাসীর অন্তর্নিহিত ধারণাকে ইতিবাচক চিন্তাধারায় উদ্ভাসিত করেছে। জনগণ ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে পরস্পরের অভিজ্ঞতার বিনিময় করছেন তার সঙ্গে ‘volunteerism’ অর্থাৎ স্ব-ইচ্ছায় কিছু করার ভাবনা বাড়িয়ে দিচ্ছে। আপনার অনুমান সঠিক। আসলে নেতারা মাইক পেলে আর লক্ষ-কোটি শ্রোতা পেলে আর কী চাই? কয়েকজন যুববন্ধু ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে এসেছিলেন এবং সব বিষয়ের উপর পর্যালোচনা করেছিলেন। ওঁরা এই সিদ্ধান্তে এসেছেন যে এই অনুষ্ঠানটি ‘অ্যাপলিটিক্যাল’। এই অনুষ্ঠানে কোনও ‘মোদি’ শব্দ থাকবে না এবং এই সঙ্কল্প নিশ্চিত করার জন্য আপনাদের সবার প্রেরণাই আমার সম্বল। প্রত্যেক ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শুরুর আগে যে সমস্ত চিঠিপত্র, comments, phone calls আসে তার থেকে জানা যায় যে শ্রোতারাও এই অনুষ্ঠান শোনার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। ১৩০ কোটি ভারতবাসীর এই ছোটো ছোটো কাহিনিগুলি সর্বদা বেঁচে থাকবে। উৎসাহ-উদ্দীপনায় ভরপুর নতুন প্রেরণা দেশকে আরও উচ্চ শিখরে পৌঁছে দেবে। আমি কখনও কখনও অতীতকে ফিরে দেখি আর বিস্মিত হয়ে যাই। স্বচ্ছতার উপর আপনাদের পাঠানো গল্পগুলি, সাধারণ মানুষের অনেক অনেক উদাহরণ — জানি না, কীভাবে কখন ঘরে ঘরে স্বচ্ছতার এই শিশু ব্র্যাণ্ড অ্যাম্বাসেডার-এর জন্ম দিয়েছে যে পরিবারের সদস্যদেরও সচেতন করে, আবার কখনও কখনও ফোন করে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী মহাশয়কেও আদেশ দিয়ে থাকে। কোনোদিন কোন সরকারের এতটা ক্ষমতা হবে কি, যে ‘selfie with daughter’ অর্থাৎ ‘নিজের কন্যার সাথে নিজস্বীর’ মত প্রকল্প হরিয়ানার এক ছোট্ট গ্রাম থেকে শুরু হয়ে, সমগ্র দেশেই নয়, সারা বিশ্বেও ছড়িয়ে পড়বে। তাদের মনই আমার মন। ‘মন কি বাত’ কিন্তু সরকারি কথা নয় – এটা সমাজের কথা। ‘মন কি বাত’ একটা আশাব্যঞ্জক, উচ্চাকাঙ্ক্ষী ভারতের কথা। সমাজজীবনের অনেক দিক থাকে যার মধ্যে রাজনীতিও একটা দিক মাত্র। রাজনীতি যদি মূল বিষয় হয়ে যায়, তা কোন সুস্থ সমাজব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি হতে পারে না। কখনও রাজনৈতিক ঘটনা বা রাজনৈতিক মানুষেরা এতটাই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে পড়ে যে সমাজের অন্য প্রতিভা বা অন্য উদ্যম ক্ষমতা অবহেলিত হয়ে পড়ে। ফোন করার জন্য আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। একদিক থেকে আপনার এই আপনার প্রশ্নটি আমাকে একজন আপনজন মনে করেই করা। আসলে ‘মন কি বাত’ আমার জন্য খুবই সোজা একটি কাজ। আমি চেষ্টায় থাকি, যে ‘মন কি বাতের’ পূর্বে যতটা সম্ভব চিঠি আর মন্তব্য নিজেই পড়ে নেওয়ার। আমি অনেকগুলি ফোনকলও শুনি। এবার ‘মন কি বাতের’ এপিসোড যত এগিয়ে আসতে থাকে, আমি বিভিন্ন স্থানে ভ্রমণের সময় আপনাদের পাঠানো মতামত এবং চিন্তাধারা খুব মন দিয়ে পড়তে থাকি। এরপর আমি কিছু তথ্য, যেমন গ্রাম, ব্যক্তির নাম – এই ধরনের তথ্যগুলি নোট করি। আমার সম্পূর্ণ আস্থা আছে যে আপনাদের বার্তা আগের থেকে অনেকগুণ বেশি আমার কাছে আসবে আর ‘মন কি বাত’-কে আরও মনোগ্রাহী, প্রভাবশালী এবং উপযোগী করে তুলবে। এটাও চেষ্টা করা হয়, যে সব চিঠি ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে অন্তর্ভুক্ত করা হয় না, সে সব চিঠি আর পরামর্শের প্রতি সংশ্লিষ্ট বিভাগও যেন নজর দেয়। আমি আকাশবাণীর সকল প্রচার মাধ্যম, দূরদর্শন, অন্যান্য টিভি চ্যানেল, social media–র বন্ধুদেরও ধন্যবাদ দিতে চাই। তাঁদের পরিশ্রমে ‘মন কি বাত’ সব থেকে বেশি লোকের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। আকাশবাণীর টিম প্রত্যেক episode-এ অনেক ভাষাতে প্রচারের জন্য তর্জমা করে। আমি ওঁদেরকেও ওঁদের ট্যালেন্ট এবং স্কিলের জন্য অভিনন্দন জানাই, ধন্যবাদ দিতে চাই। আমি আপনাদের সবাইকে অনুরোধ করছি এই অনুষ্ঠানটিকে নিজেদের আঞ্চলিক ভাষাতেও যেন অবশ্যই শোনেন। আমি মিডিয়ার ওইসব বন্ধুদেরও আমার মন থেকে ধন্যবাদ জানাই, যাঁরা নিজেদের চ্যানেলে নিয়মিত ভাবে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান প্রচার করছেন। কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি মিডিয়া থেকে তুষ্ট হয় না, ভাবেন তাঁকে অনেক কম কভারেজ করা হয়, অথবা নেতিবাচক কভারেজ হয়, কিন্তু ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রচারিত অনেক বিষয় মিডিয়া নিজেদের বিষয় করে নিয়েছে। স্বচ্ছতা, সড়ক সুরক্ষা, drugs free India, selfie with daughter ইত্যাদি বিষয়গুলিকে মিডিয়া সৃজনাত্মক পদ্ধতিতে এক অভিযানের রূপরেখা দিয়ে এদের এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেছে। সাধারণভাবে আমি বলি আমার কাছে কোনো রহস্য নেই। আমি যেটা করছি সেটা সব পরিবারে হয়ত হয়। সহজ ভাষাতে বলি – আমি ওই সব যুবাদের মতো নিজেকে তৈরি করার চেষ্টা করি, নিজেকে ওই পরিস্থিতিতে রেখে ওদের মতামতের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে একটি wave length match করার চেষ্টা করি। আমাদের নিজেদের জীবনে কিছু পুরোনো baggages আছে, সেগুলো যদি সামনে আনা না হয় তাহলে কাউকে বোঝানো সহজ হয়ে যায়। কখনো কখনো আমাদের পুরনো সংস্কারগুলি ভাবনার বিনিময়ে অন্তরায় সৃষ্টি করে। মেনে নেওয়া বা না মেনে নেওয়া এবং নিজের প্রতিক্রিয়া জাহির করার চেয়েও অন্যের কথা বোঝাটাকে আমার অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। দুজনের মধ্যে কেউ আমারা বুঝতেই পারি না, এক জন কখন কিভাবে নিজের চিন্তধারা ছেড়ে অন্যের কথা স্বীকার করে নিয়েছে – আর নিজের করে ফেলেছে। বর্তমানের যুবাদের ভাল গুণ হলো, সে যেটা নিজে বিশ্বাস করে না সেটা কখনো করে না, আর যখন কোনো জিনিসে বিশ্বাস করে তখন সব কিছ ছেড়ে তার পিছনে লেগে যায়। প্রায়ই লোকেরা পরিবারের বড়ো আর Teenager-দের মধ্যে communication gap নিয়ে আলোচনা করে। কিন্তু বেশির ভাগ পরিবারে teenager-দের সঙ্গে সীমিত বিষয়ে আলোচনা হয়। বেশিরভাগ সময় পড়াশোনার কথা অথবা অভ্যাস, life style নিয়ে কথা বার্তা হয় — এটা কর, এটা না কর । কোনো রকম শর্ত আরোপ না করে খোলা মনে কথাবার্তা ধীরে ধীরে পরিবারের মধ্যে কম হয়ে যাচ্ছে, এটাও চিন্তার বিষয়। প্রত্যাশার বদলে গ্রহণ করলে এবং খারিজ না করে আলোচনা করলে, যে কোনও সংবাদমাধ্যমই গুরুত্ব পায়। নানা ধরনের কর্মসূচি এবং সোস্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে যুবসমাজের সঙ্গে আমি অবিরাম যোগাযোগ রেখে চলেছি। যুবসমাজের ভাবনা-চিন্তা থেকে আমি সবসময় শিখি। তরুণদের কাছে নানা ধরনের আইডিয়া থাকে। তরুণরা উদ্যোমী, উদ্ভাবনী এবং লক্ষ্যে অবিচল। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমি তরুণদের প্রচেষ্টা এবং চিন্তা-ভাবনাগুলো আরও বেশি করে ভাগ করে নিতে চেষ্টা করি। আমরা প্রায়ই বলে থাকি, যে তরুণরা খুব বেশি তর্ক করে। আমি বলি কি, সদ্য তরুণরা যত প্রশ্ন করবে, ততই ভালো। আমার মনে হয়, আজকের তরুণরা খুব উচ্চাকাঙ্ক্ষী এবং তারা অনেক বৃহৎ চিন্তা করে। এটাই ভালো, ওরা স্বপ্ন দেখুক এবং সেই স্বপ্ন সফল করুক — এটাই তো ‘নতুন ভারত’। কেউ কেউ বলেন, তরুণ ছাত্ররা একসঙ্গে নানারকম কাজ করতে চায়। আমি বলি, এতে খারাপ কী আছে? ওরা ‘মাল্টি-টাস্কিং’-এ পারদর্শী, তাই ওরা এরকম করে। আমরা যদি চারদিকে দেখি, সেখানে দেখব সামাজিক উদ্যোগ হোক, ‘স্টার্ট-আপ’ হোক, খেলাধূলা হোক অথবা অন্য কোনও ক্ষেত্র — সমাজে বড় বড় পরিবর্তন তরুণরাই নিয়ে আসে। সেই তরুণরা, যারা প্রশ্ন করার এবং স্বপ্ন দেখার সাহস দেখিয়েছে। আমার প্রিয় দেশবাসী, গুরুগ্রাম থেকে ‘মাই গভ’ ওয়েবসাইটে বিনীতা-জী লিখেছেন যে, এবারের ‘মন কি বাত’-এ আগামী ২৬-শে নভেম্বরের ‘সংবিধান দিবস’ নিয়ে কিছু বলা দরকার। তাঁর বক্তব্য এটি একটি বিশেষ দিন, কারণ ভারতের সংবিধান চালু হওয়ার সত্তরতম বর্ষে আমরা প্রবেশ করছি। বিনীতাজী, আপনার এই পরামর্শের জন্যে অনেক অনেক ধন্যবাদ! হ্যাঁ, কাল ‘সংবিধান দিবস’। যাঁরা আমাদের সংবিধান প্রণয়ন করেছেন — সেই সব মহান ব্যক্তিত্বদের স্মরণ করার দিন। ১৯৪৯ সালের ২৬শে নভেম্বর আমাদের সংবিধান গৃহীত হয়েছিল। সংবিধানের খসড়া তৈরির এই ঐতিহাসিক কাজটি সম্পন্ন করতে সংবিধান সভার ২ বছর ১১ মাস ১৭ দিন সময় লেগেছিল। কল্পনা করুন, তিন বছরের মধ্যেই এই মহান প্রতিভাসম্পন্ন ব্যক্তিরা আমদের এত ব্যাপক ও বিস্তৃত সংবিধান উপহার দিয়েছেন। এঁরা যে অসামান্য গতিতে সংবিধান নির্মাণ করেছেন — তা আজকের দিনেও টাইম ম্যানেজমেন্ট ও প্রোডাক্টিভিটি-র এক অনন্য উদাহরণ। এর অনুপ্রেরণায় আমরাও আমাদের দায়িত্বগুলো রেকর্ড সময়ে শেষ করতে উজ্জীবিত হই। আমাদের সংবিধানের মূল বৈশিষ্ট্য হল যে — এখানে অধিকার এবং কর্তব্য, অর্থাৎ Rights and Duties বিষয়ে বিস্তারিত ভাবে বর্ণনা করা হয়েছে। দেশের নাগরিকদের জীবনে এই দুটি বিষয়ের ভারসাম্য — দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। আমার মনে পড়ে, ২০১০ সালে ভারতের গণতন্ত্রের ৬০ বছরে গুজরাটে আমরা হাতির পিঠের ওপর সংবিধান রেখে শোভাযাত্রা বার করেছিলাম। তরুণদের সংবিধান নিয়ে সচেতন করতে এবং তাদের সংবিধানের বিভিন্ন ধারা সম্পর্কে আগ্রহী করে তুলতে এটা একটা স্মরণীয় প্রয়াস ছিল। ২০২০ সালে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আমরা ৭০ বছর পূর্ণ করতে চলেছি এবং ২০২২ সালে আমাদের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্ণ হবে। আসুন, আমরা সবাই আমাদের সংবিধানের মূল্যকে আরও মর্যাদা প্রদান করি এবং আমাদের দেশে Peace, Progression, Prosperity অর্থাৎ শান্তি, উন্নতি এবং সমৃদ্ধি সুনিশ্চিত করি। আমার প্রিয় দেশবাসী, সংবিধান সভা সম্পর্কে কথা বলতে গেলে সেই মহাপুরুষের অবদান অনস্বীকার্য যিনি সংবিধান সভার মূলে ছিলেন। এই মহাপুরুষ হলেন মাননীয় ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর। ৬-ই ডিসেম্বর তাঁর মহাপরিনির্বাণ দিবস। সমস্ত দেশবাসীর পক্ষ থেকে আমি বাবাসাহেবকে প্রণাম জানাই, যিনি কোটি কোটি ভারতীয়কে সসম্মানে বাঁচার অধিকার পাইয়ে দিয়েছেন। প্রজাতন্ত্র বাবাসাহেবের চিন্তনের অন্তর্গত ছিল এবং উনি বলতেন যে ভারতের প্রজাতান্ত্রিক আদর্শ বহিরাগত নয়। প্রজাতন্ত্র বা সংসদীয় ব্যবস্থার সংজ্ঞা ভারতের জন্য নতুন কিছু ছিল না। সংবিধান সভায় উনি এক আবেগপ্রবণ আর্জি করেছিলেন যে, এই স্বাধীনতা বহু লড়াইয়ের পরে আমরা অর্জন করেছি আর তাই আমাদের রক্তের শেষ বিন্দু দিয়েও একে রক্ষা করতে হবে। তিনি আরও বলতেন যে আমরা ভারতীয়রা যতই ভিন্ন ভিন্ন পরিবেশে বেড়ে উঠি না কেন, দেশের কল্যাণের ভাবনা যেন সর্বদা অগ্রাধিকার পায়। ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূল মন্ত্র ছিল — India First। আরও একবার বাবাসাহেবকে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি। শ্রী গুরুনানক দেব সর্বদা মানবজাতির কল্যাণ কামনা করেছেন। উনি সমাজকে সবসময় সত্য, কর্ম, সেবা, করুণা ও সৌহার্দ্য–র পথ দেখিয়েছেন। সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত প্রদেশগুলিকে অনুরোধ করা হয়েছে ধুমধামের সঙ্গে এই দিনটি পালন করতে। এই ভাবেই শ্রী গুরুনানক দেবের ৫৫০-তম প্রকাশ পর্ব সারা বিশ্বের সমস্ত দেশে উদ্‌যাপন করা হবে। এরই সঙ্গে শ্রী গুরুনানক দেবের সঙ্গে জড়িত সমস্ত পবিত্র স্থান জুড়ে একটি ট্রেন-ও চালানো হবে। সম্প্রতি আমি যখন এই ব্যাপারে একটি আলোচনা করছিলাম তখন আমার মনে পড়ল লখপত সাহিব গুরুদ্বার-এর কথা। আমাদের এই যাত্রা চলতেই থাকবে। আপনাদের সাহচর্য আমি যত বেশি করে পাব, ততই এই যাত্রা গভীর হবে এবং সন্তোষজনক হবে। কখনও কখনও মানুষের মনে প্রশ্ন ওঠে যে, ‘মন কি বাত’ থেকে আমি কী পেলাম? আমি আজ এটা বলতে চাই যে, ‘মন কি বাত’-এর যে feedback আসে, সেখানে একটা ব্যাপার আমার হৃদয় ছুঁয়ে গেছে, বেশিরভাগ মানুষ বলেছেন যে, তাঁরা যখন সপরিবারে বসে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানটি শোনেন, তখন তাদের মনে হয় যেন পরিবারেরই কর্তা তাদের মাঝে তাদেরই কথা তাদের সঙ্গে ভাগ করে নিচ্ছেন। আসুন, এই যাত্রাকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যাই। ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্র বা মউ-এ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অনুমোদন মিলেছে। “সকলকে জানাই গণেশ চতুর্থীর অভিনন্দন। গণেশ দেবতারআশীর্বাদ বর্ষিত হোক আমাদের সকলের ওপর। ‘স্বচ্ছতাই প্রকৃত সেবা আন্দোলনে’ যোগদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আন্তরিকভাবে সকলের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আগামী দোসরা অক্টোবর আমরা গান্ধীজির জন্মের সার্ধ শতবার্ষিকী উদযাপনের সূচনা করব। বাপুর স্বপ্নের স্বচ্ছ ভারতের উদ্দেশ্য অর্জনে ইতিমধ্যেই এক ঐতিহাসিক গণ-আন্দোলনের রূপ নেওয়া স্বচ্ছ ভারত মিশনের চতুর্থ বর্ষপূর্তিও ঐদিন। স্বচ্ছ ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে যাঁরা কাজ করছেন আমি তাঁদের অভিনন্দন জানাই। ‘স্বচ্ছতাই প্রকৃত সেবা আন্দোলন’ আগামী ১৫ সেপ্টেম্বর শুরু হচ্ছে। বাপুকে শ্রদ্ধা জানানোর এ এক মহৎ উপায়। আসুন, এই আন্দোলনের অংশ হয়ে উঠুন এবং স্বচ্ছ ভারত গড়ে তোলার প্রয়াসকে আরও শক্তিশালী করুন। আসুন, আগামী ১৫ই সেপ্টেম্বর সকাল সাড়ে ন’টায় আমরা সকলে একত্রিত হই এবং স্বচ্ছতাই প্রকৃত সেবা আন্দোলনের সূচনা করি। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী লক্ষ্মীকান্ত পার্সেকার আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাত করে তাঁর হাতে ১ কোটি ৯০ লক্ষ টাকা মূল্যের একটি চেক্ তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিলের জন্য। প্রধানমন্ত্রীবলেন, নীমের আবরণ দেওয়া ইউরিয়ায় কৃষকদের জন্য যেমন সহায়তা হচ্ছে, তেমনি এর ফলেদুর্নীতি ও চুরি বন্ধ হয়েছে| মহাত্মা ফুলে-র জন্মবার্ষিকীতে তাঁর উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধা জানাই। শ্রী মোদীবলেন, “আমাদের কাছে আজ একটি বিশেষ দিন! নৌ-বাহিনীর ছ’জন মহিলা আধিকারিক ‘আইএনএসভিতারিণী’তে আরোহণ করে যাত্রা শুরু করতে চলেছেন বিশ্ব পরিক্রমার উদ্দেশ্যে। নাবিক সাগরপরিক্রমার মহিলা সদস্যের এই দলটিকে তাঁদের উল্লেখযোগ্য এই অভিযানের জন্য শুভেচ্ছাজানাতে সমগ্র জাতি আজ ঐক্যবদ্ধ। ‘এনএমঅ্যাপ’টি ব্যবহার করে নাবিক সাগর পরিক্রমার দলটির কাছে আপনাদের শুভেচ্ছা ওউৎসাহ-বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য আমি আপনাদের আহ্বান জানাই।” ভারতীয়নৌ-বাহিনীর পক্ষ থেকে শুধুমাত্র মহিলা আধিকারিকদের নিয়ে এই ধরনের অভিযানের সূচনাএই প্রথম। রবিবারেই দলটি যাত্রা শুরু করে গোয়া থেকে।অভিযান শেষে আগামী বছর মার্চমাস নাগাদ তাঁরা আবার গোয়ায় প্রত্যাবর্তন করবেন বলে আশা করা হচ্ছে । বিশ্বপরিক্রমার নাম দেওয়া হয়েছে ‘নাবিক সাগর পরিক্রমা’। নেপালের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা নেপাল কম্যুনিষ্ট পার্টির সহ-সভাপতি শ্রী পুষ্প কমল দাহাল ‘প্রচন্ডা’ আজ নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করেন। দুই নেতার মধ্যে ভারত-নেপাল সম্পর্ক এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। প্রধানমন্ত্রী, শ্রী দাহালের সঙ্গে তাঁর আগেকার বার্তালাপের কথা উল্লেখ করেন এবং ভারত-নেপাল সম্পর্কের উন্নতিতে তাঁর ভূমিকার প্রশংসা করেন। মাননীয় মিঃ কি-কে ভারতে স্বাগত জানানোর সুযোগপেয়ে আমি আনন্দিত। এইকারণে এই উৎসবের মুহূর্তে আপনাকে ভারতে স্বাগত জানানো নিঃসন্দেহে এক আনন্দের ঘটনা । আর কিছুক্ষণের মধ্যেই আমাদের দু’দেশের ক্রিকেট দলরাঁচিতে চতুর্থ একদিনের আন্তর্জাতিক ম্যাচে অংশগ্রহণ করতে চলেছে। আমাদের দু’জনের আলোচনার মধ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণস্থান অধিকার করেছিল বাণিজ্য ও বিনিয়োগ। প্রধানমন্ত্রী মিঃ কি-এর সঙ্গে যে এক বিশাল বাণিজ্য প্রতিনিধিদল এখানেউপস্থিত হয়েছেন, তারা সরাসরি প্রত্যক্ষ করবেন ভারতের উন্নয়ন প্রচেষ্টার সূত্রেবিভিন্ন ধরনের বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধাগুলি। তাঁদের মধ্যে আলোচনা ও মতবিনিময়ও নতুননতুন বাণিজ্যিক সমঝোতা গড়ে তুলবে আমাদের এই দুটি দেশের মধ্যে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ,কৃষি ও দুগ্ধোৎপাদন এবং সেগুলির সরবরাহ ব্যবস্থা যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারেরক্ষেত্রে বিশেষ সম্ভাবনাময় সে কথা উল্লেখ করব আমি। এই ক্ষেত্রগুলিতেনিউজিল্যান্ডের দক্ষতা ও ক্ষমতা ভারতের বিশাল প্রযুক্তির সম্ভাবনার সঙ্গে যুক্তহয়ে এমন এক অংশীদারিত্বের জোটবন্ধন গড়ে তুলতে পারে যাতে উপকৃত হবে আমাদের দুটিদেশই। এই প্রসঙ্গে দু’দেশেরপক্ষে কল্যাণকর এবং ভারসাম্যরক্ষাকারী এক সুসংবদ্ধ অর্থনৈতিক চুক্তির দ্রুতসম্পাদনের লক্ষ্যে একযোগে কাজ করে যাওয়ার বিষয়টিতেও সম্মত হয়েছি আমরা। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির উন্নয়ন প্রচেষ্টায় আমাদের অবদানের পাশাপাশি নিউজিল্যান্ডের সঙ্গেআন্তরিকভাবে আমরা শলাপরামর্শ চালিয়ে যাব কিভাবে পারস্পরিক প্রচেষ্টায় আমরা একেঅপরের পরিপূরক বা সম্পূরকের ভূমিকা পালন করতে পারি। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর সদস্যপদে ভারতের আবেদনবিবেচনার লক্ষ্যে যে গঠনমূলক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছে নিউজিল্যান্ড, সেজন্য আমিধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রী মিঃ কি-কে। সন্ত্রাসবাদ এখনও রয়েছে বিশ্ব শান্তি ওনিরাপত্তার ক্ষেত্রে অন্যতম প্রধান চ্যালেঞ্জরূপে। সন্ত্রাসের আর্থিক, সার্বিক তথাতথ্য সংক্রান্ত নেটওয়ার্কের বিস্তৃতি এখন সমগ্র বিশ্ব জুড়ে। ভৌগোলিক দিক থেকেজঙ্গি হানা ও সন্ত্রাসবাদের কবল থেকে মুক্ত নেই বিশ্বের কোন অঞ্চলই। এই হুমকিরমোকাবিলায় মানবতায় বিশ্বাসী সমস্ত জাতিরই উচিত তাদের নীতি ও কর্মপ্রচেষ্টাকেসমন্বয়ের সঙ্গে যুক্ত করা। সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের মোকাবিলায় সাইবার নিরাপত্তাসহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের নিরাপত্তা ও গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় সহযোগিতাকে আরওজোরদার করে তুলতে সম্মত হয়েছি আমি এবং প্রধানমন্ত্রী মিঃ কি। নিউজিল্যান্ডের অধিবাসীরা আপনার নেতৃত্বের ওপর বারংবারকেন আস্থা ও আত্মবিশ্বাস স্থাপন করেছেন তার পরিচয়ও পেয়েছি আমি। আমাদের দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্ককে আরও এগিয়েনিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এবং এই দুটি দেশ ও তার জনগণের মধ্যে মৈত্রী বন্ধনকে সুদৃঢ় করেতুলতে আপনার ব্যক্তিগত অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতির জন্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে বুধবার ভারত এবং ব্রুনেই দারুস্‌সালাম-এর মধ্যে যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক ক্ষেত্রে ‘সমঝোতা পত্র’ (মউ) সাক্ষর সম্পর্কে জানানো হয়েছে। দুই দেশের মধ্যে এই মউ গত ০২-০২-২০১৬ তারিখে ব্রুনেই-এর বান্দার সেরি বেগাওয়ান-এ সাক্ষরিত হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ঝাড়খন্ডের রাঁচি সফর করেন। তিনি সেখানে আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির নির্দিষ্ট কিছু সুফলভোগীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন। এই উপলক্ষে ঝাড়খন্ডের রাজ্যপাল শ্রীমতী দ্রৌপদী মূর্মু এবং মুখ্যমন্ত্রী শ্রী রঘুবর দাস উপস্থিত ছিলেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, গত বছরের ২৩ সেপ্টেম্বর শ্রী মোদী রাঁচি থেকে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা – আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির সূচনা করে বলেছিলেন যে, ‘গরিব মানুষের স্বার্থে এই উদ্যোগ আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসবে’। প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার উদ্দেশ্য হ’ল – দরিদ্র ও আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া মানুষের আর্থিক বোঝা লাঘব করে তাঁদের উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদান সুনিশ্চিত করা। এছাড়াও, দেশের ৫০ কোটিরও বেশি মানুষকে উন্নত স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রদানে প্রত্যেক পরিবারের জন্য বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার বন্দোবস্ত করা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১৬ই ডিসেম্বর উত্তরপ্রদেশ সফর করবেন। রায়বেরিলিতে প্রধানমন্ত্রী অত্যাধুনিক রেল কামরা উৎপাদন কারখানা পরিদর্শন করবেন। এক জনসভায় তিনি ৯০০তম রেল কামরা এবং ঐ কারখানায় নির্মিত একটি হামসফর ট্রেনের সূচনা করবেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ, উদ্বোধন অথবা শিলান্যাস করবেন। এই উপলক্ষে এক জনসভাতেও তাঁর ভাষণ দেওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী প্রয়াগরাজে যাবেন। সেখানে তিনি কুম্ভ মেলার জন্য একটি অত্যাধুনিক পরিচালনা কেন্দ্রের (কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার) উদ্বোধন করবেন। স্বচ্ছ কুম্ভ প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পাশাপাশি তিনি গঙ্গা পুজো দেবেন। প্রয়াগরাজে শ্রী মোদী ‘অক্ষয়বট’ ঘুরে দেখবেন। প্রধানমন্ত্রী প্রয়াগরাজের বারাউলি বিমানবন্দরে যাবেন। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে ভারত ও ডেনমার্কের মধ্যে সহযোগিতামূলক চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি আজ (২৭ জুন) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী’র পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কমনওয়েলথ গেমস্‌-এ সোনা জেতায় ভারতীয়মহিলা টেবিল টেনিস দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “ভারতীয় মহিলা টেবিল টেনিস দলের যথার্থ প্রাপ্য ওঐতিহাসিক সোনা জয়! গোটা দলকে অভিনন্দন। এই ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “কলকাতায় একটি নির্মীয়মান ফ্লাইওভার ভেঙ্গে পড়ার খবরে আমি বিচলিত ও মর্মাহত। পরিস্থিতি এবং উদ্ধার কাজ সম্পর্কে জানতে চেয়েছি আমি। কলকাতার এই ঘটনায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের পরিবার-পরিজনদের দুঃখ ও ব্যথার অংশীদার আমি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে মনুষ্যবাহিত মহাকাশযান ‘গগণযান’ কর্মসূচিটি অনুমোদিত হয়েছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে তিন জন ব্যক্তিকে মনুষ্যবাহিত জিএসএলভি মার্ক – ৩ মহাকাশযানের সাহায্যে মহাকাশে পাঠানো হবে। ‘গগণযান’ কর্মসূচিকে সফল করে তুলতে মহাকাশ যাত্রীদের প্রশিক্ষণ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে। এই কাজে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো-কে বিভিন্ন জাতীয় সংস্থা, গবেষণাগার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও শিল্প সংস্থা সহায়তা করবে। ব্যাপক কর্মসংস্থানের পাশাপাশি, সর্বাধিক প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে এক প্রশিক্ষিত মানবসম্পদ গড়ে উঠবে। এছাড়াও, জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে কর্মজীবন হিসাবে গ্রহণে বিপুল সংখ্যক ছাত্রছাত্রীকে উৎসাহিত করবে। যুক্তরাজ্যের লন্ডনে অনুষ্ঠিত ‘ভারত কি বাত সব কে সাথ’ অনুষ্ঠানে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি তাঁদের বিভিন্ন প্রশ্ন মনযোগ দিয়ে শোনেন এবং তার উত্তরও দেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য থেকে কিছু কিছু অংশ এখানে তুলে ধরা হল। আর লন্ডনের রাজপ্রাসাদে যিনি আজ উপস্হিত রয়েছেন তিনি ১২৫ কোটি ভারতবাসীর সেবক। রেল স্টেশনের সেই জীবন থেকে আমি অনেক কিছুই শিক্ষালাভ করেছি। তা ছিল আমার এক ব্যক্তিগত সংগ্রামের অধ্যায়। আপনারা যখন রাজপ্রাসাদের কথা বলবেন তখন কিন্তু আমার সম্পর্কে কিছু বলবেন না, বলবেন ১২৫ কোটি ভারতবাসী সম্পর্কে। মানুষের উচ্চাশা বা উচ্চাকাঙ্খা কিন্তু কোন দিক দিয়েই মন্দ কিছু নয়। কোনও ব্যক্তির যদি একটি সাইকেল থাকে তাহলে খুব স্বাভাবিকভাবেই তাঁর একটি স্কুটার কেনার বাসনা হতে পারে। আবারযদি কোনও ব্যক্তির একটি স্কুটার থাকে তাহলে তার একটি মোটরগাড়ি কেনার ইচ্ছা হতেই পারে। কারণ উচ্চাশা বা আশা-আকাঙ্খা মানুষের একটি স্বাভাবিক প্রবৃত্তি। একটি দেশ হিসাবে ভারতও এইভাবে উত্তরোত্তর উচ্চাকাঙ্খী হয়ে উঠছে। ইতিহাসের বইতে স্হান পাওয়ার জন্য কিন্তু আমি জন্মগ্রহণ করি নি। তাই আমি আপনাদের সকলের কাছে অনুরোধ জানাই যে আমাদের দেশকে আপনারা মনে রাখুন, মোদীকে নয়। কারণ আমি আর সকলের মতোই ভারতের এক সাধারণ নাগরিক মাত্র। ভারতের ইতিহাসের দিকে একবার ফিরে তাকান। অন্য দেশের ভূখন্ড নিজের বলে ভারত কখনই দাবি করে না। প্রথম ও দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যোগ দিয়েছিল আমাদের সৈন্যরা। তা ছিল এক বড় ধরণের জীবনোৎসর্গের সময়। রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা বাহিনীতে আমাদের ভূমিকার কথাই এর বড় প্রমাণ। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি। কিন্তু যারা সন্ত্রাস সৃষ্টি করতে চায় তাদের আমরা কোনভাবেই বরদাস্ত করব না। প্রয়োজনে আমাদের প্রত্যুত্তর এতটাই কঠোর হবে যা তারা বেশ ভালোভেবেই বুঝতে পারবে। সন্ত্রাসকে কখনই মদত দেওয়ার বিষয়টিতে কোনোভাবেই সমর্থন করা যায় না। এই কারণেই দরিদ্র, প্রান্তিক এবং পিছিয়ে পড়া মানুষদের জন্য আমি কাজ করে যেতে আগ্রহী। আর সমাজের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার স্বার্থে অভুতপূর্ব কাজ করেছেন। ভারতের ১২৫ কোটি মানুষকে আমি আমার একান্তই স্বজন বলে মনে করি। এর আগে কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইজরায়েল সফর করেননি। কিন্তু আমি যেমন ইজরায়েল সফরে যাব তেমনি আবার প্যালেস্টাইনেও সফর করব। একদিকে আমি যেমন ভারতের জ্বালানী চাহিদার প্রয়োজনে সৌদি আরবের সঙ্গে সহযোগিতার প্রসার ঘটাবো, অন্যদিকে তেমনই সহযোগিতা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাব ইরানের সঙ্গেও। গঠনমূলক সমালোচনা ছাড়া কোনও গণতন্ত্রই সফল হতে পারে না। সমালোচনা হলেও তাতে আমার কোনও আপত্তি বা সমস্যা নেই। তবে সমালোচনার জন্য অবশ্যই সবকিছু খুঁটিয়ে দেখে আসল তথ্য বের করা প্রয়োজন। কিন্তু দুঃখের বিষয় তা কিন্তু বর্তমানে ঘটছে না। বরং যা ঘটছে তা হল শুধু অভিযোগ। তাই আমি আপনাদের সকলের কাছে আবেদন জানাবো যে আমাদের দেশকে আপনারা মনে রাখুন, মোদীকে নয়। আমি আপনাদের আর সকলের মতই ভারতের একজন সাধারণ নাগরিক মাত্র। শ্রী লাডু কিশোর সোয়াইনের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “ওডিশার আস্কার লোকসভার শ্রী লাডু কিশোর সোয়াইনজীর মৃত্যুতে আমি শোকাহত। সমাজ সেবার জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর গ্রামোন্নয়নের কাজ উল্লেখযোগ্য। গুজরাট ফরেন্সিক সায়েন্সেস ইউনিভার্সিটির সমাবর্তন অনুষ্ঠানে আজ উপস্হিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ঐ অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী বলেন, এই বিশ্ববিদ্যালয় এবং এখানকার ছাত্রছাত্রীরা পথপ্রদর্শকের ভূমিকায় রয়েছে। ছাত্রছাত্রীদের প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাদের আত্মবিশ্বাস এবং স্হির সংকল্প আগামীদিনে তাদের যথেষ্ঠ সাহায্য করবে। শ্রী মোদী বলেন, একটি দৃঢ় বিচার ব্যবস্হা নাগরিকদের নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করে, পাশাপাশি অপরাধও কমায় যা দক্ষ পুলিশবাহিনী এবং যোগ্য বিচার-বিভাগীয় ব্যবস্হার মতোই। তিনি আরও বলেন, মানুষ কোন অপরাধ করলে, তার ভয় থাকা উচিত যে, যে কোন মুহূর্তে সে ধরা পড়ে যেতে পারে। এখানে বিচারসংক্রান্ত বিজ্ঞানের গুরুত্ব অপরিসীম। প্রধানমন্ত্রী ঐ বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশংসা করে বলেন, অপরাধ সংক্রান্ত অনুসন্ধান এবং সঠিক রায় দানের ক্ষেত্রে এই বিশ্ববিদ্যালয় একটি আন্তর্জাতিক মানের মানবসম্পদ ভান্ডার সৃষ্টি করতে পেরেছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় বিশ্বব্যাপী নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। তিনি আগামী দিনে বিচার ব্যবস্হাকে সহায়তা করতে ডিএনএ প্রোফাইলিং ব্যবহারের ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও মরক্কোর মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষর এবং তা অনুমোদনের সিদ্ধান্তে সবুজ সংকেত দেওয়া হয়েছে। এই আয়োগ প্রতিষ্ঠার ফলে দেশে গবাদি পশুর সংরক্ষণ, সুরক্ষা এবং বিকাশে গতি আসবে এবং দেশীয় গবাদি পশু শাবকের বিকাশ এবং সংরক্ষণেও সহায়ক হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রাষ্ট্রপতিজিকেজন্মদিনের শুভেচ্ছা| সর্বশক্তিমান তাঁকে আমাদের দেশের প্রতি উত্সর্গীকৃত এক দীর্ঘও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল জীবনের অধিকারী করুন| রাষ্ট্রপতিজি হিসেবেতাঁর মেয়াদ শুরু হওয়ার পর থেকেই তিনি তাঁর সাধারণ ও সহানুভূতিশীল চরিত্রের দ্বারা নিজেকেদেশের জনগণের প্রিয় করে তুলেছেন| কিন্তু চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হওয়ার ৩৫ বছর পরও এই গুরুত্বপূর্ণ ৬ নম্বগর ধারাটি পরিপূর্ণভাবে রূপায়ণের ব্যবস্থা হয়নি বলে মনে করা হচ্ছে। এরই প্রেক্ষিতে মন্ত্রিসভা এই উচ্চ পর্যায়ের কমিটি গঠনের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করেছে। এই কমিটি ৬ নম্বর ধারা রূপায়ণের লক্ষ্যে সাংবিধানিক, আইনগত এবং প্রশাসনিক রক্ষা কবচের সুপারিশ করবে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের সঙ্গে আলোচনা করে অসমীয়াদের জন্য বিধানসভা এবং স্থানীয় স্বায়ত্ত্বশাসিত সংস্থায় আসন সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে সুপারিশ করবে। মরিশাসের জাতীয় উপকূল রক্ষীবাহিনীর সেবায় বারাকুদা আনুষ্ঠানিকভাবে জলে ভাসানো আমার কাছে এক বিশেষ সম্মানের বিষয়। আমাকে এই সুযোগ দেওয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। ভারতকে একজন অংশীদার হিসেবে বেছে নেওয়ার জন্যও আপনাদের ধন্যবাদ। জাহাজটি সুদূর কলকাতা থেকে ভারত মহাসাগর হয়ে এই সুন্দর উপকূলে এসে পৌঁছেছে। বহু প্রজন্ম আগে ভারতের কিছু মানুষ এই নতুন দেশে এসে নতুনভাবে জীবন শুরু করেছে। আজ বারাকুদা জাহাজটি সঙ্গে নিয়ে এসেছে ভারতীয় জনগণের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। জাহাজটি আমাদের সবিশেষ আস্থা ও আত্মবিশ্বাসেরই প্রতীক। এর মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়েছে আমাদের পারস্পরিক অংশীদারিত্বের বিষয়টি যা আজ কালের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। আমাদের দু’দেশের মধ্যেই ভারত মহাসাগর পারস্পরিক অঙ্গীকার, শান্তি ও নিরাপত্তার এক সেতুবন্ধন তৈরি করেছে। বারাকুদা জাহাজটি সত্যিই খুব সুন্দর। এটি যেমন মজবুত, তেমনই মরিশাসের উপযোগী করে তৈরি। আজ এই জাহাজটি জলে ভাসল মরিশাসের পতাকাকে সঙ্গে নিয়ে। এই জাহাজ আপনাদের জলভূমি ও দ্বীপপুঞ্জকে রক্ষা করবে। দুর্যোগ ও আপৎকালীন পরিস্থিতিতে এই জাহাজ হয়ে উঠবে আপনাদের সুরক্ষার সহায়ক। কিন্তু এই জাহাজটির কাজ হবে তার থেকেও আরও অনেক বেশি। ভারত মহাসাগরকে আরও নিরাপদ ও সুরক্ষিত করতে এটি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। এই মহাসাগরের ওপর দিয়েই ভেসে চলে বিশ্বের দুই-তৃতীয়াংশ তৈলবাহী জাহাজ, এক-তৃতীয়াংশ পণ্যবাহী জাহাজ এবং প্রায় অর্ধেক বড় বড় কন্টেনার জাহাজ। এর ওপর দিয়ে চলাচলকারী জাহাজগুলির তিন-চতুর্থাংশই পৌঁছে যায় বিশ্বের বিভিন্ন অঞ্চলে। অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া, দক্ষিণ এশিয়া, পশ্চিম এশিয়া এবং আফ্রিকার পূর্ব সমুদ্র উপকূল জুড়ে এই মহাসাগরের প্রসার ও বিস্তৃতি। আর, একইসঙ্গে বিভিন্ন দ্বীপ রাষ্ট্রেরও অবস্থান এই ভারত মহাসাগর অঞ্চলেই। চিন্তা করতে পারেন, কি বিশাল সুযোগ এই মহাসাগরটিকে ঘিরে ! এশিয়া ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় দেশগুলির কর্মশক্তি ও গতিশীলতা আজ একবিংশ শতাব্দীকে উজ্জ্বল করে তুলেছে – একথা আজ বিশ্বের সর্বত্র স্বীকৃতি লাভ করেছে। কিন্তু ভারত মহাসাগরের ঢেউ তার মধ্যে নিয়ে এসেছে নতুন প্রাণচাঞ্চল্য। আর, এই কারণেই সর্বকালের তুলনায় ভারত মহাসাগর আজ বিশ্ববাসীর ভাবনাচিন্তার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। ভারত মহাসাগরে সমগ্র বিশ্বই আজ তাদের উপস্থিতির জানান দিতে চায়। আজকের এই পরিবর্তনশীল বিশ্বে মহাসাগরগুলি হবে অদৃষ্টের সূচক। তাই, আমাদের সমুদ্র উপকূলকে সকলের জন্যই নিরাপদ, সুরক্ষিত ও অবাধ করে তুলতে পারলেই আসবে সকলের বিকাশ ও সমৃদ্ধি। এই বিষয়টিকে সুনিশ্চিত করে তোলাই হবে আমাদের সম্মিলিত দায়িত্ব। কিন্তু একই সঙ্গে এই অঞ্চলে আরও কিছু বিশেষ বিশেষ চ্যালেঞ্জ রয়েছে সেগুলিও আমাদের মোকাবিলা করতে হবে। সুনামি ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো বিপর্যয়ের মোকাবিলা আমরা করেছি। অবৈধভাবে মাছ ধরা এবং তেল চুরি করার মতো ঘটনা আমাদের অর্থনীতির ক্ষতি করেছে। আমাদের বিভিন্ন দ্বীপ ও উপকূলে ক্রমাগত জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাও কম নয়। উপকূলবর্তী অঞ্চল এবং দ্বীপ রাষ্ট্রগুলিতে স্থিতিশীলতার অভাব ও উত্তেজনা আমাদের সমুদ্র বরাবর নিরাপত্তার ব্যবস্থাতেও কম চাপ সৃষ্টি করেনি। ভারত মহাসাগরের সন্ধিস্থলে অবস্থিত আমাদের এই দেশ। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রসারিত এশিয়া ও আফ্রিকায়। ভারত মহাসাগর বরাবর আমাদের এই মহাদেশে রয়েছে তার উজ্জ্বল উপস্থিতি। বাণিজ্য, সংস্কৃতি এবং ধর্মের মেলবন্ধন ঘটেছে আমাদের এই সমুদ্র উপকূলেই, যা লক্ষ লক্ষ বছর ধরে প্রসার লাভ করেছে প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলিতে। এই মহাদেশের বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যে যে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের বাতাবরণ গড়ে উঠেছে তার সমর্থন মেলে আমাদের সাম্প্রতিক ইতিহাসেই। আমাদের দেশ জুড়ে যে সমুদ্র এলাকা রয়েছে তা ভারতকে আরও নানাভাবে বিকশিত হতে সাহায্য করেছে। বর্তমানে আমাদের মোট বাণিজ্যের ৯০ শতাংশ এবং তেল আমদানির ৯০ শতাংশই হয় জলপথে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারত দিন দিন আরও সংহত হয়ে উঠছে। যত দিন যাচ্ছে ততই আমরা ভারত মহাসাগর এবং সন্নিহিত এলাকার ওপর আরও বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়ছি। তাই, এর ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার দায়িত্বও আমাদের অবশ্যই গ্রহণ করতে হবে। আর, এই কারণেই ভারত মহাসাগর অঞ্চল রয়েছে আমাদের নীতি সংক্রান্ত অগ্রাধিকারের শীর্ষে। এর অর্থ কিন্তু একটি নয়। দেশের মূল ভূখণ্ড ও দ্বীপগুলিকে রক্ষা করতে এবং আমাদের স্বার্থ রক্ষায় যা কিছু করা প্রয়োজন তা আমাদের করতে হবে। ভারত মহাসাগর অঞ্চল যাতে আমাদের সকলকে সমৃদ্ধির উপকূলে নিয়ে যেতে পারে সেই লক্ষ্যে এই অঞ্চলের সুরক্ষা, নিরাপত্তা ও সুস্থিতির জন্য আমাদের কাজ করে যেতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের কর্মক্ষমতাকে কাজে লাগাতে হবে মহাসাগরের রোষ থেকে মানুষকে রক্ষা করার জন্য। যারা সমুদ্র উপকূলে বিপদে পড়বেন, তাদের বাঁচাতে হবে আমাদেরই। ঐ দেশগুলির সমুদ্র উপকূলে নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক শক্তি বৃদ্ধির জন্যও আমাদের কাজ করে যেতে হবে। তৃতীয়ত, সমবেত সহযোগিতা ও কর্মপ্রচেষ্টা আমাদের এই নৌ-উপকূলে শান্তি ও নিরাপত্তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে। আপৎকালীন পরিস্থিতির আরও ভালোভাবে মোকাবিলা করতে তা আমাদের বিশেষভাবে সাহায্য করবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই ২০০৮ সালে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নৌ-সংক্রান্ত এক আলোচনা আহ্বান করা হয়েছিল। বর্তমানে এই মহাসাগর জুড়ে রয়েছে ৩৫টি নৌ-বাহিনীর সম্মিলিত শক্তি। চতুর্থত, সকলের জন্য নিরন্তর বিকাশের সম্ভাবনার পথ প্রশস্ত করে তোলার লক্ষ্যে সকলের সহযোগিতার ভিত্তিতে আমাদের গ্রহণ করতে হবে এক সুসংহত ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার অঙ্গীকার। আমাদের জাতীয় পতাকায় যে নীল রঙের চক্র আমরা দেখতে পাই আমার মতে তা হল নীল বিপ্লবের, অর্থাৎ মহাসাগরীয় অর্থনীতির সম্ভাবনার প্রতীক। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ভবিষ্যৎ যাতে নিরন্তর সমৃদ্ধির সূচক হয়ে উঠতে পারে সেজন্য এক দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে তুলতে ইন্ডিয়ান ওশ্যন রিম অ্যাসোসিয়েশনের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। সমুদ্রবেষ্টিত ভূখণ্ডে আঞ্চলিক সহযোগিতার কথা আমরা বলে থাকি। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এক সহযোগিতা গোষ্ঠী গড়ে তোলার সময় এখন উপস্থিত। আগামী বছরগুলিতে আরও নতুন উদ্যম নিয়ে এই লক্ষ্যে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। ভৌগোলিক দিক থেকে আমরা যেমন একে অপরের সঙ্গে যুক্ত, ঠিক একইভাবে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রেও আমরা একে অপরের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধ হতে চাই। যে মহাসাগর সমগ্র বিশ্বকে এক করে তুলেছে তাকে সকলের শান্তি ও সমৃদ্ধির জন্য উন্নত করে তুলতে হবে। মরিশাসে ভারত মহাসাগরের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা যে আজ আমি তুলে ধরতে পারছি তা কিন্তু নেহাত সমাপতন নয়। বিশ্বের যে সমস্ত দেশের সঙ্গে আমাদের নৌ-সম্পর্ক রয়েছে, মরিশাস শুধুমাত্র তাদের অন্যতমই নয়, এই দেশের সঙ্গে আমাদের গড়ে উঠেছে এক ঘনিষ্ঠ ও নিবিড় সম্পর্ক। আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। একসঙ্গেই আমরা বাড়িয়ে তুলব আমাদের কর্মদক্ষতা। সমুদ্র উপকূল বরাবর প্রশিক্ষণ ও প্রহরার কাজও আমরা করে যাব যুক্তভাবে। এই অংশীদারিত্বের ভিত কিন্তু বিশাল ও প্রসারিত। এক সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি ও সাধারণ মূল্যবোধের অংশীদার আমরা। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের স্বার্থে নিজেদের গণ্ডিতে আবদ্ধ না থেকে আমাদের আরও দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন করতে হবে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে এক নিরন্তর, সুরক্ষিত ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার কাজে মরিশাসের নেতৃত্বও অনস্বীকার্য। তাই, ভারত মরিশাসের সহযোগী দেশ হয়ে ওঠার জন্য গর্বিত। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (২৩ জানুয়ারি) নতুন দিল্লীর লালকেল্লায় সুভাষ চন্দ্র বসু সংগ্রহালয়ের উদ্বোধন করবেন। সুভাষ চন্দ্র বসু ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি সম্পর্কিত সংগ্রহালয়ের উদ্বোধন উপলক্ষে তিনি ফলকের আবরণ উন্মোচন করবেন। পরে তিনি সংগ্রহালয় ঘুরেও দেখবেন। জালিয়ান ওয়ালাবাগ ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ইয়াদ-এ-জালিয়ান সংগ্রহালয়টিও তাঁর ঘুরে দেখার পরিকল্পনা রয়েছে। দিল্লির লালকেল্লায় ১৮৫৭-তে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ সম্পর্কিত সংগ্রহালয় এবং ভারতীয় শিল্পকলা নিয়ে গড়ে ওঠা দৃশ্যকলা সংগ্রহালয়টিও শ্রী মোদী ঘুরে দেখবেন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি সংগ্রহালয়ে সুভাষ চন্দ্র বসু এবং ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির ঐতিহাসিক তথ্য ও বিবরণ রয়েছে। এই সংগ্রহালয়ে সুভাষ চন্দ্র বসু ও ন্যাশনাল আর্মির ব্যবহৃত নানা সামগ্রী প্রদর্শিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ২০১৮-র ২১ অক্টোবর এই সংগ্রহালয়ের শিলান্যাস করেছিলেন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর গঠিত আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে এই সংগ্রহালয়ের শিলান্যাস করা হয়েছিল। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার মূল্যবোধগুলিকে তুলে ধরতে লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির মূল্যবোধ ও আদর্শগুলিকে প্রধানমন্ত্রী আরও একবার গত ৩০শে ডিসেম্বর আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ সফরের সময় জনসমক্ষে তুলে ধরেছিলেন। ভারতীয় ভূ-খন্ডে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকিট, মুদ্রা ও ছোট পুস্তিকা প্রকাশ করেন। ভারতের স্বাধীনতার জন্য আন্দামান-নিকোবরের অসংখ্য যুবক নেতাজীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে কিভাবে নিজেদের উৎসর্গ করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী সেকথাও স্মরণ করেন। ১৯৪৩-এর সেই বিশেষ দিনটি, যেদিন নেতাজী ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলন, সেই ঘটনাকে স্মরণে রেখেই প্রধানমন্ত্রী ১৫০ ফুট দীর্ঘ জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন। নেতাজীর প্রতি যথাযথ শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাতে শ্রী মোদী রস দ্বীপের নাম পাল্টে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু দ্বীপ রাখেন। এর আগে, ২০১৫-র অক্টোবরে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর পরিবারের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে দেখা করে কেন্দ্রীয় সরকাররের হেফাজতে থাকা নেতাজী সম্পর্কিত বিভিন্ন ফাইল প্রকাশের জন্য তাঁকে অনুরোধ জানান। ভারতীয় জাতীয় মহাফেজখানায় আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে গত বছরের জানুয়ারি মাসে শ্রী মোদী নেতাজী সম্পর্কিত ১০০টি ফাইলের ডিজিটাল সংস্করণ জনসমক্ষে প্রকাশ করেন। ইয়াদে-এ-জালিয়ান সংগ্রহালয়ে ১৯১৯-এর ১৩ এপ্রিল জালিয়ান ওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের বিভিন্ন তথ্য রাখা হয়েছে। এছাড়াও এই সংগ্রহালয়ে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় ভারতীয় সেনানীদের বীরত্ব, সৌর্য্য ও আত্মবলিদানের নানা কাহিনী স্হান পেয়েছে। ১৮৫৭-তে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের সঙ্গে জড়িত নানা ঐতিহাসিক ঘটনার পাশাপাশি ভারতীয়দের সাহসীকতা ও আত্মবলিদানের ঘটনা এই সংগ্রহালয়ে তুলে ধরা হয়েছে। ষোড়শ শতাব্দী থেকে ভারতের স্বাধীনতা পর্যন্ত ভারতীয় শিল্পকলার নানা নিদর্শন দৃশ্যকলা সংগ্রহালয়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্হা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জাতীয় ক্রীড়া দিবসে আজ দেশের সব ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া প্রেমীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। যাঁর জন্মদিনটি জাতীয় ক্রীড়া দিবস রূপে পালিত হয় সেই হকিরজাদুকর ধ্যানচাঁদের উদ্দেশ্যেও তিনিশ্রদ্ধা নিবেদন করেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, “জাতীয় ক্রীড়া দিবসে আমি সেইসব ক্রীড়াবিদ ও ক্রীড়া প্রেমীদের অভিনন্দন জানাইযাঁরা সুকঠোর সাধনা ও জীবনের স্বপ্ন হিসেবে ক্রীড়াচর্চাকে গ্রহণ করেছেন। ক্রীড়াক্ষেত্রেরআদর্শস্বরূপ মেজর ধ্যানচাঁদ, যাঁর প্রবাদপ্রতীম দক্ষতা ভারতীয় হকির ইতিহাসেবিস্ময়ের সৃষ্টি করেছিল, তাঁকেও আমি শ্রদ্ধা জানাই। খেলাধূলা হলশারীরিক সক্ষমতা, মানসিকভাবে সজাগ থাকা ও ব্যক্তিত্ব বিকাশের এক মাধ্যম। ভারতেঅসামান্য ক্রীড়া প্রতিভা রয়েছে। এই সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে ক্রীড়া বিভাগ কর্তৃকএকটি পোর্টাল চালু করা হয়েছে। প্রথমেই মাননীয় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানাই তাঁর উষ্ণ আবেগ ও অনুভূতি এবং উদার আতিথেয়তার জন্য। আসিয়ান এবং পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠকের ব্যস্ততার মাঝে আমাকে এইভাবে সঙ্গ দেওয়ার জন্য আমি আপনার ভূমিকার বিশেষ প্রশংসা করি। এই ধরনের এক বৈশিষ্ট্যময় শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন এবং আসিয়ান গোষ্ঠী গড়ে তোলার জন্য আপনার উদ্যোগকে আমি অভিনন্দন জানাই। পূর্ব-দক্ষিণ-এর দশম বার্ষিকীতে এ সম্পর্কিত আপনার পর্যালোচনা এই অঞ্চলের এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চের ক্ষেত্র প্রস্তুত করার কাজে সাফল্য এনে দিয়েছে। পর পর দুটি বিমান দুর্ঘটনা যেকোন জাতির মনোবল দুর্বল করে দিতে পারে। আমাদের অটুট সম্পর্ক যেভাবে সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে চলেছে সেজন্য আপনার নেতৃত্বের কাছে আমরা কৃতজ্ঞ। আমাদের দু’দেশের সম্মিলিত ইতিহাসে অনেকগুলি মাত্রা রয়েছে। ধর্ম ও সংস্কৃতির দিক থেকে আমাদের সম্পর্ক সুপ্রাচীন। মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের মাধ্যমে আমাদের মধ্যে গড়ে উঠেছে এক বিশেষ ও শক্তিশালী বন্ধন। এই সম্প্রদায়ের সঙ্গে গতকাল সন্ধ্যায় কথা বলার সুযোগ আমার হয়েছিল। বৈচিত্র্য ও গণতন্ত্র আমাদের দুটি দেশের চরিত্রই নির্ধারণ করে দিয়েছে। আমরা গড়ে তুলেছি এক দৃঢ় অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। নৌ-পথেও আমরা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত। এই অঞ্চল সম্পর্কে পথ ও দৃষ্টিভঙ্গীর ক্ষেত্রেও আমাদের এই দুটি দেশের মধ্যে মিল ও সাদৃশ্য রয়েছে এবং আঞ্চলিক মঞ্চগুলিতে আমরা পরস্পরের সঙ্গে মিলিতভাবেই কাজ করি। এভাবেই এক সমৃদ্ধ সম্পর্কের মধ্য দিয়েই আমরা সহমত হয়েছি আমাদের শীর্ষ বৈঠক, মন্ত্রী পর্যায়ের আলোচনা এবং সরকারি কথাবার্তা আরও নিয়মিত করে তোলার ব্যাপারে। আমাদের এই সম্পর্ককে চিরস্মরণীয় করে রাখতে নতুন উদ্যমে আমরা কাজ করে যাব এই আশ্বাস আমি আপনাকে দিতে পারি। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য আমি আপনার কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। কারণ, নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় এর মধ্যেই নিহিত রয়েছে আমাদের মিলিত অঙ্গীকার। এই ক্ষেত্রটিতে আমাদের সহযোগিতাকে গভীরতর করে তোলার লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যাব। চ্যালেঞ্জের মুখে দাঁড়িয়ে বিশ্ব প্রচেষ্টায় আপনি রেখেছেন এক গুরুত্বপূর্ণ অবদানের স্বাক্ষর। নৌ-নিরাপত্তাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং এই অঞ্চলে বিপর্যয়ের মোকাবিলায় উপযুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আমরা আমাদের প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে করে তুলব আরও বলিষ্ঠ ও জোরদার। আমি আনন্দিত যে আমাদের এই যৌথ প্রচেষ্টাকে আরও উন্নীত করতে এবং ‘এস ইউ ৩০’ ফোরাম গড়ে তুলতে আমরা পরস্পরের সঙ্গে সহমত হয়েছি। আমাদের কর্মপ্রচেষ্টাকে আরও কঠিন ও দুরূহ পরিস্থিতি সামাল দিতে এবং প্রশিক্ষণ ও প্রতিরক্ষার সাজসরঞ্জাম গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত করে তুলব। সাইবার নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা চুক্তিটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ককে তাৎপর্যপূর্ণভাবেই আরও উন্নত করে তুলতে প্রধানমন্ত্রীর আস্থা ও বিশ্বাসকে সমর্থন জানাই আমিও। আমাদের দ্বিপাক্ষিক চুক্তিগুলির পূর্ণ সদ্ব্যবহার এবং ভারত-আসিয়ান চুক্তির পূর্ণ সম্ভাবনা সফল করে তুলতে আমরা বিশেষভাবে আগ্রহী। আঞ্চলিক স্তরে এই সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব সম্পর্কিত চুক্তি দ্রুত চূড়ান্ত করার লক্ষ্যেও আমরা সচেষ্ট রয়েছি। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে দক্ষতার জন্য মালয়েশিয়ার যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। ভারতে সড়ক সহ বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পের কাজ মালয়েশিয়া সাফল্যের সঙ্গেই সম্পূর্ণ করেছে। পরিকাঠামোর প্রসার ও উন্নয়ন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি এবং স্মার্ট সিটি প্রকল্পে মালয়েশিয়ার সক্রিয় অংশগ্রহণ আমরা একান্তভাবে কামনা করি। বেশ কিছু ভারতীয় সংস্থা মালয়েশিয়ায় কাজ করছে। ইরকন এখানে রেল পরিকাঠামোর উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। মালয়েশিয়ার অর্থনীতিতে ভারতের উপস্থিতি ও অংশগ্রহণ আরও জোরদার করে তুলতে আমরা আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী এবং আমি দু’জনে দ্রুত ও সুনির্দিষ্ট সাফল্যের পথে এগিয়ে যেতে কৃতসঙ্কল্প। আজ একটু পরেই আমি এখানে মিলিত হব মালয়েশিয়ার সি ই ও-দের সঙ্গে। সরকারি প্রশাসন ও পরিচালন ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতাকে আমরা আরও মজবুত করে তোলার পথে এগিয়ে গিয়েছি। আমি ব্যক্তিগতভাবে ‘পেমান্ডু’র সঙ্গে মতবিনিময় করেছি, আমাদের নিতি আয়োগও তার সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় মিলিত হবে। সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগকে নিবিড় করে তোলার বিষয়টিকে আমরা বিশেষ গুরুত্বের সঙ্গে চিন্তাভাবনা করছি। আপনারা সকলেই হয়তো জানেন, ব্রিক্‌সফিল্ডে লিট্‌ল ইন্ডিয়া-র প্রবেশ পথে প্রধানমন্ত্রী নাজিব ও আমি যুগ্মভাবে টোরানা গেটের উদ্বোধন করব। ভারতের পক্ষে এটি একটি উপহার,প্রধানমন্ত্রী নাজিবের তরফ থেকে প্রীতি ও ভালবাসার লক্ষ্যে ভারতের জন্য একটি প্রীতি উপহার। শুধু তাই নয়, দু’দেশের জনসাধারণের সুপ্রাচীন মৈত্রী ও সম্পর্কের এটি এক উজ্জ্বল প্রতীক। আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক যে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে এই স্থির বিশ্বাস আমার রয়েছে। অদূর ভবিষ্যতে আপনার ভারত সফরের অপেক্ষায় রইলাম। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী উগান্ডায় বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের মানুষের উদ্দেশে বুধবার (২৫ জুলাই) এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। সেদেশের রাষ্ট্রপতি মুসেভেনি-ও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, তিনি নিজেকে উগান্ডায় বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের একজন হিসাবে উপলব্ধি করেছেন। এই অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি মুসেভেনির সামিল হওয়া ভারতের মানুষের প্রতি তাঁর ভালোবাসাকেই প্রতিফলিত করে। উগান্ডার সংসদে বুধবার ভাষণ দেওয়ার জন্য তিনি যে সম্মান পেয়েছেন, এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সেদেশের রাষ্ট্রপতি মুসেভেনি ও উগান্ডার মানুষজনকে ধন্যবাদ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ও উগান্ডার সম্পর্ক কয়েক শতাব্দী প্রাচীন। ঔপনিবেশিক সাম্রাজ্যবাদের বিরুদ্ধে লড়াই ও উগান্ডায় রেল পরিকাঠামো নির্মাণ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক যোগসূত্রের কথাও তিনি স্মরণ করেন। তিনি বলেন, উগান্ডার রাজনীতিতেও বহু ভারতীয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভারতীয় ভাবধারা ও আদর্শের রীতি অনুসরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় সম্প্রদায়ের মানুষের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, উগান্ডা সহ আফ্রিকার সমস্ত দেশ ভারতের কাছে গুরুত্বপূর্ণ। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, ঔপনিবেশিকতাবাদের বিরুদ্ধে সংগ্রামের এক অভিন্ন ইতিহাস, বিপুল সংখ্যায় প্রবাসী ভারতীয় এবং অভিন্ন উন্নয়নমূলক চ্যালেঞ্জই এ সমস্ত কিছুর মূল কারণ। তিনি আজ (বুধবার, ২৫ জুলাই) বলেন, ভারত বিশ্বের দ্রুত বিকাশশীল অর্থনীতি। ভারত এখন মোটরগাড়ি ও স্মার্টফোন রপ্তানি করছে। ভারতের বিদেশ নীতিতে আফ্রিকার গুরুত্বের কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি নতুন দিল্লিতে ২০১৫ সালে আয়োজিত ভারত-আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলনের কথা উত্থাপন করেন। ভারত ও আফ্রিকার দেশগুলির মধ্যে একাধিক ক্ষেত্রে উচ্চ স্তরীয় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আফ্রিকার বিভিন্ন দেশকে ভারতের পক্ষ থেকে সহজশর্তে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তা, ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি প্রদান, ই-ভিসা চুক্তি প্রভৃতির কথাও উল্লেখ করেন। আন্তর্জাতিক সৌর জোটের সমস্ত সদস্য দেশের মধ্যে প্রায় অর্ধেক দেশই আফ্রিকার-ই বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। দীপাবলী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার কেদারনাথ সফর করেন। ঐতিহাসিক কেদারনাথ মন্দিরে তিনি পূজার্চনায় অংশ নেন। কাজকর্মের অগ্রগতি সম্বন্ধে উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা তাঁকে অবহিত করেন। মন্দির প্রাঙ্গণে উপস্থিত মানুষের সঙ্গেও তিনি সংক্ষিপ্ত আলাপচারিতায় অংশ নেন। কেন্দ্রীয় শিল্পনিরাপত্তা বাহিনীর (সিআইএসএফ) গ্রুপ ‘এ’ পর্যায়ের একজিকিউটিভ ক্যাডারের রিভিউসম্পর্কিত একটি প্রস্তাব আজ অনুমোদিত হলপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরনেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। ঐ রিভিউ প্রস্তাবে বাহিনীর উচ্চপর্যায়েআধিকারিক নিয়োগের সংখ্যা বৃদ্ধি করতে অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ড্যান্ট থেকে অ্যাডিশনালডিরেক্টর জেনারেল পদমর্যাদার অতিরিক্ত পদ সৃষ্টিরকথাবলা হয়েছে। সার্বিকভাবে বৃদ্ধি পাবে বাহিনীর প্রশাসনিকক্ষমতাও। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চৌধুরি চরণ সিং-এর জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। ২.১ রান্নার গ্যাস সংক্রান্ত পরিকাঠামোর মানোন্নয়নে শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সহযোগিতা। ২.২ আবাসন, শিক্ষা এবং বৈদ্যুতিকিকরণ প্রকল্পগুলিতে সহায়তা দিয়ে রাখাইন প্রদেশে উন্নয়নমূলক প্রয়াসগুলির মধ্যে সঙ্গতি বজার রেখে মায়ানমারের সঙ্গে সহযোগিতা। ২.৩ রামগড় থেকে বড়িয়ারহাট পর্যন্ত অংশে চার লেন বিশিষ্ট সড়ক এবং সেতু পুনর্নিমাণ করা, সেইসঙ্গে যানুমা নদীর ওপর যমুনা রেল ব্রীজ নির্মাণ এবং রোলিং স্টক সরবরাহ করে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতা। ২.৪ কেনিয়াতে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রের উন্নয়নে একটি সেমিনার আয়োজনের পাশাপাশি ঐ দেশেই স্বাস্হ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক প্রকল্পের অঙ্গ হিসাবে একটি ক্যান্সার হাসপাতাল স্হাপনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে আফ্রিকার সঙ্গে সহযোগিতা। ভারত-জাপান সহযোগিতা অ্যাক্ট-ইস্ট ফোরাম ১.ভারতের পূবে তাকাও নীতিতে ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সর্বদাই অগ্রাধিকার পেয়ে থাকে। গত ৮ই অক্টোবর ফোরামের দ্বিতীয় বৈঠকে নিম্নলিখিত বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়েছে- ২.১ প্রকল্প বা কর্মসূচিগুলির রূপায়ণ ত্বরান্বিতকরণ মেঘালয় উত্তরপূর্ব যোগাযোগ স্হাপন প্রথম পর্যায় : তুরা-ডালু (জাতীয় মহাসড়ক ৫১) দ্বিতীয় পর্যায় : শিলং-ডাউকি (জাতীয় মহাসড়ক ৪০) মিজোরাম উত্তরপূর্ব যোগাযোগ স্হাপন প্রথম ও দ্বিতীয় পর্যায় : আইজল-তুইপাঙ (জাতীয় মহাসড়ক ৫৪) সিকিম : জীব বৈচিত্রের সংরক্ষণ ও সুষ্ঠু বন পরিচালনা নাগাল্যান্ড : অরণ্য সংরক্ষণ, জীবন-জীবিকার মানোন্নয়ন ২.২ ভারত ও জাপান নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে অগ্রসর হতে তাদের আগ্রহের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছে। এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের সহযোগিতায় ধুবড়ি/ফুলবাড়ি সেতু প্রকল্প সহ গেলেফু-ডালু করিডরের কাজ শেষ করা। ধুবড়ি/ফুলবাড়ি সেতু প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হলে এটি নদীর ওপর নির্মিত ভারতের দীর্ঘতম সেতু হয়ে উঠবে। তৃতীয় পর্যায়ের উমিয়াম-উমত্রু জলবিদ্যুৎ উৎপাদনকেন্দ্রের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ প্রকল্পের জন্য সরকারি উন্নয়নমূলক ঋণ সহায়তা বা ওডিএ। উত্তর-পূর্বাঞ্চলে বাঁশের প্রাচুর্য থাকায় এবং এই অঞ্চলে বাঁশের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে ‘জাপান-ভারত উত্তরপূর্ব বাঁশ উদ্যোগ’ শুরু করা হবে। এই উদ্যোগের আওতায় শিল্পক্ষেত্রে বাঁশের ব্যবহারের পাশাপাশি বাঁশ অরণ্যের সুষ্ঠু পরিচালনার বিষয়টিকেও গুরুত্ব দেওয়া হবে। ভারতের ১০০টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে জাপানী ভাষার পাঠ্যক্রম চালু করার ব্যাপারে দু দেশের প্রধানমন্ত্রী যে অঙ্গিকার করেছেন তার অঙ্গ হিসাবে উত্তরপূর্বাঞ্চলে জাপানী ভাষাশিক্ষার প্রসারে গুরুত্ব দেওয়া হবে। কটন বিশ্ববিদ্যালয়, অসমের গুয়াহাটি বিশ্ববিদ্যালয়, মেঘালয় ও নাগাল্যান্ডের একটি করে প্রতিষ্ঠান এ ধরনের পাঠ্যক্রম শুরু করার বিষয়ে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। জাপানী ভাষা শিক্ষা প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের মাধ্যমে এই উদ্যোগগুলিকে সহায়তা দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলি থেকে জাপানী ভাষা শিক্ষার আরও প্রস্তাব পাওয়া গেলে তাকে স্বাগত জানানো হবে। ২.৪ বিপর্যয় ব্যবস্হাপনা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের স্হায়ি পরিকাঠামো নির্মাণে এবং পার্বত্য অঞ্চলে মহাসড়ক ক্ষেত্রে দক্ষতা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের মাধ্যমে জাপানের সহায়তা। বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস সংক্রান্ত জাপান-ভারত কর্মশিবির আয়োজনের মাধ্যমে জ্ঞানের আদান-প্রদান। ভারত-জাপান অর্থনৈতিক এবং ওডিএ বা সরকারি উন্নয়নমূলক ঋণ সহায়তা ভারতে সুস্হায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্যগুলি পূরণে সরকারি উন্নয়নমূলক ঋণ সহায়তার মাধ্যমে সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য ভারত ও জাপানের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলির মধ্যে শুরু হওয়া আলোচনাকেও ভারতের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে। বারাণসী সম্মেলন কেন্দ্র জাপানের পক্ষ থেকে এই কেন্দ্রটি নির্মাণে ইতিমধ্যেই যে অতিরিক্ত অনুদান সহায়তা প্রদান করা হয়েছে, ভারত তার প্রশংসা করেছে। যানজট এড়ানো এবং শহরাঞ্চলীয় পরিবেশের উন্নয়নে অনুদান সহায়তা বেঙ্গালুরু শহরের কেন্দ্রস্হলে যানজট সংক্রান্ত তথ্য ও সুষ্ঠুভাবে যানজট এড়ানোর জন্য আধুনিক ব্যবস্হা গড়ে তোলা সম্পর্কিত প্রকল্পটি রূপায়ণে অনুদান সহায়তার লক্ষ্যে যে নথিপত্র বিনিময় হয়েছে, ভারত তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেছে। রেল ক্ষেত্রে ভারত-জাপান সহযোগিতা ভারতে যোগাযোগ ব্যবস্হায় বৈপ্লবিক পরিবর্তন নিয়ে আসতে এবং উচ্চগতি সম্পন্ন রেল চালু করতে ভারত ও জাপান মুম্বাই-আমেদাবাদ উচ্চগতিসম্পন্ন রেল করিডর নির্মাণে সহযোগিতা করছে। এই প্রকল্পটির গুরুত্বের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে সর্বোচ্চ পর্যায়ে নজরদারির জন্য নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান ডঃ রাজীব কুমার এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-র বিশেষ উপদেষ্টা ডঃ হিরোতো ইজুমির সভাপতিত্বে যৌথ কমিটি গঠন করা হয়েছে। পশ্চিমাঞ্চলীয় ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডর এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের জন্য দুটি দরপত্র বন্টন করা হয়েছে। প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান নির্মাণের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এবং ২০২০ ডিসেম্বর মাস নাগাদ এটি চালু হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। উচ্চগতিসম্পন্ন রেল প্রকল্প পরিচালনার জন্য পর্যাপ্ত সংখ্যক কর্মীকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দিতে উভয় দেশই সম্মত হয়েছে। ইতিমধ্যেই ভারতীয় রেলের ২৮৭ জন তরুণ আধিকারিক জাপানে প্রশিক্ষণ পেয়েছেন। ভারতীয় রেল আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের জন্য জাপান সরকার প্রতি বছর ২০ জন আধিকারিককে প্রশিক্ষিত করে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। প্রযুক্তিগত সহযোগিতার জন্য জাপানের নিরাপত্তা বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি দল ইতিমধ্যেই ভারত সফরে এসে এদেশে রেল সুরক্ষা নিরাপত্তার বিষয়গুলি খতিয়ে দেখি গিয়েছে। সুরক্ষা ও নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ভারতীয় রেলের ক্ষমতা বৃদ্ধি এবং রেললাইনের রক্ষণাবেক্ষনের জন্য প্রযুক্তিগত সহযোগিতার আওতায় রেল নিরাপত্তা বিষয়ক একটি প্রকল্প গ্রহণ করা হবে। মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগে ভারত-জাপান সহযোগিতা চলতি বছরের জুলাই মাসে গুজরাটের আমেদাবাদে জেটরো বিজনেস সাপোর্ট সেন্টার চালু করার পাশাপাশি জাপান-ভারত বিনিয়োগ প্রসার পরিকল্পনার ওপর ভিত্তি করে দুই দেশেই বিনিয়োগের প্রসারে একাধিক সেমিনার আয়োজিত হয়েছে। নতুন এক উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে ভারত ও জাপানের দুই সংস্হা- এমইটিআই এবং ডিআইপিপি কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকারগুলির প্রশাসনিক কাজকর্ম পরিচালনা প্রণালীকে আরো সুবিন্যাস্ত করতে‘অ্যাডভান্সড মডেল সিঙ্গল ইউন্ডো’ গড়ে তোলার ব্যাপারে পারস্পরিক সহযোগিতার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এক কার্যকর লজিস্টিক সাপ্লাই ব্যবস্হা গড়ে তুলতে যে লজিস্টিক ডেটা ব্যাঙ্ক প্রকল্প চালু করার সিদ্ধান্ত হয়েছে, সেটি ভারতে বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে সহায়তা করবে। দক্ষতা উন্নয়ন ক্ষেত্রে ভারত-জাপান সহযোগিতা স্বাক্ষরিত সহযোগিতা সমঝোতাপত্রের মাধ্যমে ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত জাপানী সংস্হাগুলি জাপান-ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ ম্যানুফ্যাকচারিং এবং জাপানীজ এনডাওয়েড কোর্স চালু করার মাধ্যমে দক্ষতা উন্নয়ন ক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করছে। জাপান-ইন্ডিয়া ইন্সটিটিউট অফ ম্যানুফ্যাকচারিং সংস্হা জাপানী পদ্ধতিতে উৎপাদন প্রক্রিয়ার ব্যাপারে ভারতের শিল্পপতিদের প্রশিক্ষণ প্রদানের কাজ ইতিমধ্যেই শুরু করেছে। ভারতে উৎপাদন ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ইঞ্জিনিয়ারদের প্রশিক্ষণদানের জন্য নির্দিষ্ট কয়েকটি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজে জাপানীজ এনডাওয়েড কোর্স চালু হয়েছে। কেন্দ্রীয় দক্ষতা উন্নয়ন ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রক গত বছরের অক্টোবর মাসে জাপানের স্বাস্হ্য, শ্রম ও কল্যাণ তথা সেদেশের ন্যায়বিচার এবং পররাষ্ট্র বিষয়ক মন্ত্রকের সঙ্গে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অর্ন্তবর্তী প্রশিক্ষণ কর্মসূচি পরিচালনা সংক্রান্ত একটি সহযোগিতাপত্র স্বাক্ষর করেছে। এই সহযোগিতাপত্র স্বাক্ষরের ফলে প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অর্ন্তবর্তী প্রশিক্ষণ কর্মসূচিটির যথাযথ রূপায়ণের জন্য দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে এক অনুকূল বাতাবরণ গড়ে উঠছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ১৫জন ভারতীয় শিক্ষানবীশের প্রথম দলটি বিভিন্ন জাপানী সংস্হায় কাজের জন্য প্রশিক্ষণ পাবেন। এছাড়াও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অর্ন্তবর্তী প্রশিক্ষণ কর্মসূচির মাধ্যমে আরো ১৭ জন ভারতীয় প্রযুক্তি-শিক্ষানবীশ জাপানে বিভিন্ন সংস্হায় কাজের সুযোগ পাচ্ছেন। ডিজিটাল অংশিদারিত্ব ক্ষেত্রে ভারত-জাপান সহযোগিতা দৈনন্দিন জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে প্রযুক্তি নির্ভর এই যুগে একযোগে অগ্রসর হতে এবং জাপানের‘সোসাইটি ৫.০’ তথা ভারতের ডিজিটাল ইন্ডিয়া, স্মার্ট সিটি ও স্টার্ট আপ ইন্ডিয়ার মতো ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচিগুলির মধ্যে আরো ভালো সমন্বয় গড়ে তুলতে উভয় দেশই কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ইন্টারনেট অফ থিঙ্কস-এর মতো পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তুলতে সম্মত হয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকেও জাপান-ভারত স্টার্ট আপ হাব সংক্রান্ত একটি অনলাইন প্ল্যাটফর্ম গড়ে তোলা হয়েছে। কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, খাদ্য নিরাপত্তা, বনাঞ্চল এবং মৎসচাষ ক্ষেত্রে ভারত ও জাপানের মধ্যে সহযোগিতা ভারতের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক এবং জাপানের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতাপত্রের ওপর ভিত্তি করে যৌথ কর্মীগোষ্ঠী গঠিত হয়েছে। এই সমঝোতাপত্রটি ২০১৬-র ১১ নভেম্বর ভারতের প্রধানমন্ত্রীর জাপান সফরকালে স্বাক্ষরিত হয়। এই কর্মসূচির প্রথম বিনিয়োগ হিসাবে খাদ্য সংক্রান্ত তেলেঙ্গানা মেগা প্রজেক্টটিকে চিহ্নিত করা হয়। জাপানী প্রযুক্তি ব্যবহার করে ভারতে কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়াতে জাপান কিভাবে সাহায্য করতে পারে সেই নিয়ে উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। জাপানের ইন্টারন্যাশনাল রিসার্চ সেন্টার ফর এগ্রিকালচার সায়েন্সেস এবং ভারতের কৃষি গবেষণা পর্ষদ বা আইসিএআর-এর মধ্যে গত ৯ ফেব্রুয়ারী যৌথ গবেষণামূলক একটি গবেষণাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। এ সংক্রান্ত আরো একটি সমঝোতাপত্র ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পমন্ত্রক এবং দুই জাপানী সংস্হা- কাগমে ও নিশান স্টিলের মধ্যে গত ২৯ অক্টোবর স্বাক্ষরিত হয়। ৪ জাপানে ভারতীয় বাজার সমীক্ষার জন্য খাদ্য সংস্হাগুলির সংগঠন এই পরিষদের সদস্য সংখ্যা প্রায় চারশো। গত মে মাসে খাদ্য সংক্রান্ত ভারত-জাপান বাণিজ্য পর্ষদের সূচনা হয়েছে। খাদ্য নিরাপত্তা এই সমঝোতাপত্র অনুযায়ী সহযোগিতামূলক ক্ষেত্র হিসাবে ৭টি বিষয় চিহ্নিত করা হয়েছে। এগুলি হল- মানবসম্পদ উন্নয়ন এবং প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক আদান-প্রদান ;বনাঞ্চলের সুষ্ঠু বিকাশ ও পরিচালনা ; বনাঞ্চল সংরক্ষণ উদ্যোগ বৃদ্ধি করা এবং বনাঞ্চলে বিপর্যয় প্রতিরোধ ; জৈব বৈচিত্রের সংরক্ষণ ; বনজ সম্পদের কার্যকর সদ্ব্যবহার ; বন সংরক্ষণ ও পরিচালনা সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক প্রযুক্তিগুলির কার্যকর প্রয়োগ এবং অরণ্যক্ষেত্রে গবেষণা ও উন্নয়ন। গত ২৩ জুলাই যৌথ কর্মীগোষ্ঠীর তৃতীয় বৈঠকে ২০১৮ থেকে ২০২২ পর্যন্ত সময়ে বনাঞ্চল সংরক্ষণ ক্ষেত্রে ভারত-জাপান ভবিষ্যৎ দিশা নির্দেশ রচনা সংক্রান্ত সিদ্ধান্ত গৃহিত হয়েছে। মানুষের আহারের জন্য মাছ ও মৎসজাত পণ্য ভারতে রপ্তানীতে প্রয়োজনীয় শংসাপত্র গত মার্চ মাসে পাওয়া গেছে। চিংড়ি ও এ জাতীয় অন্যান্য মাছ জাপান থেকে ভারতে রপ্তানীতে প্রয়োজনীয় শংসাপত্র গত অক্টোবর মাসে পাওয়া গেছে। জাপানের কৃষি, বনাঞ্চল এবং মৎসচাষ বিষয়ক মন্ত্রক এবং রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে সহযোগিতা। সমবায় সমিতির মাধ্যমে ডেয়ারী ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত মানুষের জীবন-জীবিকার মানোন্নয়নে জাপান আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এজেন্সি গত জুলাই মাসে সমীক্ষার কাজ শুরু করেছে। ভারত-জাপান নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ২০০৮ সালে নিরাপত্তা সহযোগিতা সংক্রান্ত ভারত-জাপান যৌথ ঘোষনাপত্র প্রকাশের পর থেকে অভিন্ন নিরাপত্তার লক্ষ্যে যৌথ প্রয়াস গ্রহণে বিগত দশকে লক্ষণীয় অগ্রগতি হয়েছে। আঞ্চলিক শান্তি ও স্হিতিশীলতা রক্ষায় ভারত-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে পারস্পরিক সহায়তা এবং সামুদ্রিক নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্প্রসারণের মাধ্যমে ভারত ও জাপান সামুদ্রিক নিরাপত্তার সহযোগিতা গড়ে তুলেছে। দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীদের মধ্যে ত্রয়োদশ শীর্ষ বৈঠকে ভারতীয় নৌবাহিনী এবং জাপানের নৌবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতাকে আরও নিবিড়তর করার জন্য স্বাক্ষরিত চুক্তিটিকে স্বাগত জানানো হয়েছে। দুই দেশের সেনাবাহিনীর মধ্যে এ ধরনের সহযোগিতা কৌশলগত সম্পর্ক আরও জোরদার করবে। ভবিষ্যৎ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা সাজ-সরঞ্জাম ও প্রযুক্তির আদান-প্রদানে ব্যাপক সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতীয় নৌবাহিনী এবং জাপানের সেনাবাহিনীর মধ্যে সহযোগিতাকে আরো নিবিড়তর করতে অক্টোবর মাসে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চুক্তির ফলে তথ্য আদান-প্রদানের পাশাপাশি দুই দেশের নৌবাহিনীর মধ্যে যৌথ মহড়া চালানোর পন্হা-পদ্ধতি নির্ধারণ করা আরো সহজ হবে। ভারতের জাতীয় বিপর্যয় ব্যবস্হাপনা কর্তৃপক্ষকে (এনডিএমএ) এ সংক্রান্ত কর্মসূচি রূপায়ণে প্রধান দায়িত্ব দেওয়া হয়। সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতাপত্রের আওতায় বিপর্যয় ঝুঁকি হ্রাস বিষয়ক ভারত-জাপান প্রথম কর্মশিবিরটি গত মার্চ মাসে নয়া দিল্লীতে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এ সংক্রান্ত দ্বিতীয় কর্মশিবির গত ১৫ অক্টোবর টোকিওতে আয়োজিত হয়। ভারত-জাপান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তথা শিক্ষা বিষয়ক সহযোগিতা ভারত-জাপান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সহযোগিতা ১৯৮৫ সালে আন্তঃসরকারি চুক্তি স্বাক্ষরের মাধ্যমে চূড়ান্ত হয়। সাম্প্রতিক উদ্যোগসমূহ সুস্হায়ী উন্নয়ন কর্মসূচির জন্য বিজ্ঞান-প্রযুক্তি গবেষণা অংশীদারিত্বের আওতায় উদীয়মান দেশগুলির জন্য স্মার্ট সিটি গড়ে তোলা সংক্রান্ত একটি প্রকল্প ২০১৭তে শুরু হয়েছে। বিজ্ঞান ক্ষেত্রে জাপান-এশিয়া যুব বিনিময় কর্মসূচির আওতায় ২০১৭-র এপ্রিল থেকে গত মার্চ পর্যন্ত ৬৫৫ জন ছাত্রছাত্রী ও তত্ত্বাবধায়ক জাপান সফর করেছেন। কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তরের মনোনীত ৩৯ জন ছাত্রছাত্রী এই কর্মসূচির আওতায় গত মে মাসে জাপান সফর করেছেন। জাপানের রিটসুমেইকান বিশ্ববিদ্যালয়ে গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং, সেদেশের ওমরন কর্পোরেশন এবং ভারতের হায়দ্রাবাদ আইআইটি-র মধ্যে শিক্ষানবীশ প্রকল্প বিষয়ক একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। জাপানের হিরোসীমা বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে ভারতের ৮টি প্রতিষ্ঠানের চুক্তি ও সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। উভয় দেশ জলবায়ু ও মহাসাগরীয় গতিপ্রকৃতির মতো ক্ষেত্রে যৌথ গবেষণা চালানোর প্রস্তাব করেছে। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারত-জাপান যৌথ গবেষণা কর্মসূচির আওতায় দুই দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলি ভবিষ্যতেও পারস্পরিক সহযোগিতা বজায় রাখতে গবেষণামূলক উদ্যোগ গ্রহণের ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করছে। ২০২০ সালের গোড়ার দিকে মেরু প্রদেশে যৌথ সমীক্ষা চালানোর ব্যাপারেও দুই দেশের সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলি সম্মত হয়েছে। ভারতে জাপানী ভাষা শিক্ষার প্রসার ভারতে বিগত কয়েক বছর ধরে জাপানী ভাষায় দক্ষ পেশাদারদের ক্রমবর্ধমান চাহিদার প্রেক্ষিতে ভারত ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীরা বিভিন্ন ক্ষেত্রে দুই দেশের সহযোগিতাকে আরও সম্প্রসারিত ও নিবিড়তর করতে ভারতে জাপানী ভাষা শিক্ষার প্রয়োজনীয়তার গুরুত্বকে স্বীকার করেছেন। ভারতে জাপানী ভাষা শিক্ষার প্রসারে ২০১৭-র ১৪ সেপ্টেম্বর জাপানের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে একটি সহযোগিতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়। প্রশিক্ষণ পর্বে বিভিন্ন ধরণের শিক্ষণ পদ্ধতি সহ শ্রেণীকক্ষে শিক্ষাদানের পন্হা পদ্ধতির ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট প্রশিক্ষনরত ব্যক্তিদের দক্ষ করে তোলা হয়। এই প্রশিক্ষণ পর্বে মোট ২৫ জন সাফল্যের সঙ্গে উত্তীর্ণ হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার (১১ই সেপ্টেম্বর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের আশা, অঙ্গনওয়াড়ি এবং এএনএম (অক্সিলারি নার্স মিডওয়াইফ) কর্মীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও পুষ্টি পরিষেবার মান বাড়াতে উদ্ভাবনী পন্থা-পদ্ধতি এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশ থেকে অপুষ্টি দূর করতে পুষ্টি অভিযান সফল করতে প্রধানমন্ত্রী ঐ কর্মীদের একজোট হয়ে কাজ করার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী তৃণমূল স্তরের স্বাস্থ্যকর্মীদের অবদান স্বীকার করে নিয়ে শক্তিশালী ও স্বাস্থ্যসমৃদ্ধ দেশ গঠনে তাঁদের প্রচেষ্টার জন্য ধন্যবাদ দেন। পুষ্টি মাস অভিযানের অঙ্গ হিসেবে ঐ মতবিনিময় অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। অভিযানের উদ্দেশ্য, পুষ্টির গুরুত্বের বার্তা প্রতিটি পরিবারে পৌঁছে দেওয়া। এই অভিযানে যত বেশি সম্ভব মহিলা ও শিশুদের সামিল করা অত্যন্ত জরুরি বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, পুষ্টি ও গুণগত মানের স্বাস্থ্য পরিচর্যার সঙ্গে যুক্ত বিষয়গুলির ওপর সরকার নজর রেখেছে। মহিলা ও শিশুদের স্বাস্থ্য কর্মসূচির ওপর গুরুত্ব দিয়ে দ্রুতগতিতে টিকাকরণের কাজ এগিয়ে চলেছে। স্বাস্থ্যকর্মী ও স্বাস্থ্য পরিষেবার সুফলভোগীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। প্রধানমন্ত্রী ‘মিশন ইন্দ্রধনুষ’ কর্মসূচি যথাযথভাবে রূপায়ণ এবং তিন লক্ষেরও বেশি গর্ভবতী মহিলার পাশাপাশি ৮৫ কোটির বেশি শিশুর টিকাকরণের জন্য আশা, এএনএম এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের প্রচেষ্টা ও আন্তরিকতার প্রশংসা করেন। মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী এই স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযানের তথ্য আরও প্রচার করার আহ্বান জানান। নবজাতকদের স্বাস্থ্য পরিচর্যায় অর্জিত সাফল্যের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে প্রতি বছর ১২ লক্ষ ৫০ হাজার শিশু উপকৃত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য ও জাতির অগ্রগতির মধ্যে যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করে বলেন, শিশুরা যদি দুর্বল ও রুগ্ন হয়, তাহলে দেশের অগ্রগতিও মন্থর হয়ে পড়ে। প্রতিটি শিশুর জন্মের প্রথম হাজার দিন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই সময়ে শিশুর পুষ্টিগত আহার, খাদ্যাভ্যাসই ঠিক করে দেয় তার চেহারা কেমন হবে, লেখাপড়ায় কেমন হবে এবং মানসিক দিক থেকে সে কত শক্তিশালী হবে। দেশের নাগরিকরা যদি স্বাস্থ্যবান হন, তাহলে সেই দেশের সার্বিক উন্নয়ন কেউ রুখতে পারবে না। তাই, শিশুর জন্মের প্রথম হাজার দিনে দেশের ভবিষ্যৎ যাতে সুনিশ্চিত করা যায় তার জন্য একটি শক্তিশালী ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রয়াস চালানো হচ্ছে। এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন যে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (হু) এক প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বচ্ছ ভারত অভিযানের আওতায় শৌচালয়ের ব্যবহার তিন লক্ষ নিরীহ জীবন বাঁচাতে পারে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার প্রতি নাগরিকদের আন্তরিকতার জন্য প্রধানমন্ত্রী আরও একবার তাঁদের অভিনন্দন জানান। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কর্মসূচির প্রথম সুফলভোগী করিশ্মা নামের শিশুটির কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এছাড়াও, আশাকর্মী ও তাঁদের সহায়িকাদের ‘প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা’ এবং ‘প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা’র আওতায় বিনামূল্যে বিমার সুবিধা প্রদান করা হবে। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের যে পারিশ্রমিক দেওয়া হয়, তাতেও উল্লেখযোগ্য পরিমাণে বৃদ্ধির কথাও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন। যে সকল অঙ্গনওয়াড়ি কর্মী এখন তিন হাজার টাকা পাচ্ছেন, তাঁরা এবার থেকে সাড়ে চার হাজার টাকা পাবেন। একইভাবে, যাঁরা এতদিন ২,২০০ টাকা পেয়ে এসেছেন, তাঁরা এবার ৩,৫০০ টাকা করে পাবেন। বর্ষীয়ান হিন্দি কবি কেদারনাথ সিং-এর প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী শোক ব্যক্ত করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “মহান কবি ও লেখক কেদারনাথ সিং-এর মৃত্যুতে তিনিগভীর দুঃখ পেয়েছেন। এই কবি তাঁর কবিতায় সাধারণ মানুষের আবেগকে তুলে ধরেছেন। তিনিসর্বদাই সাধারণ মানুষ ও সাহিত্য জগতের কাছে অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবেন”। ২০১৩ সালে কেদারনাথ সিং-কে সাহিত্য ক্ষেত্রে তাঁর অবদানের জন্য জ্ঞানপীঠপুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছিল। দেশের লক্ষ লক্ষ শিক্ষকদের উদ্দেশে এক ই-মেল বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শিশুদের জীবনে তাঁদের গুরুত্বপূর্ণ প্রভাবের কথা উল্লেখ করে বলেছেন, শিক্ষকরা যে মূল্যবোধ শিশুদের শেখান, তা সারা জীবন তাদের সঙ্গে থেকে যায়। প্রধানমন্ত্রী দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামকে উদ্ধৃত করে বলেছেন, “শিক্ষকতা অত্যন্ত মহান এক পেশা এবং একজন ব্যক্তি মানুষের চরিত্র, দক্ষতা এবং ভবিষ্যৎ গড়ে দেয়।” শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, যেসব সমাজ শিক্ষা, গবেষণা এবং উদ্ভাবনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেয়, তারাই একুশ শতকের ভবিষ্যৎ নির্ধারণ করবে। তিনি বলেন, বলাই বাহুল্য যে এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভূমিকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের উদ্দেশে তাঁর চিঠিতে আশা প্রকাশ করে বলেছেন যে শিক্ষকরা প্রযুক্তির সর্বশেষ অগ্রগতি বিষয়ে নিজেদের অবহিত রাখছেন এবং প্রযুক্তির সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সংযোগ গড়ে তুলছেন। এ প্রসঙ্গে শিক্ষাক্ষেত্রে ভারত সরকার কর্তৃক গৃহীত কিছু উদ্যোগ যে নতুন পরিবর্তনের সূচনা করতে চলেছে, সে বিষয়েও তিনি উল্লেখ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, শিক্ষকদের অক্লান্ত পরিশ্রমের ফলেই আমাদের দৃষ্টি বরাদ্দ থেকে ফলাফলের প্রতি নিবদ্ধ হয়েছে, শিক্ষাদান থেকে শিক্ষা গ্রহণের প্রতি আগ্রহ বেড়েছে। তিনি বলেন, ‘অটল টিঙ্কারিং ল্যাব’-এর মতো উদ্যোগের ফলে দক্ষতা বৃদ্ধির কাজে গুরুত্ব বৃদ্ধি পেয়েছে। সারা ভারত জুড়ে যেভাবে অসংখ্য বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপিত হচ্ছে তাতে কোন ছাত্রই উচ্চমানের শিক্ষার আনন্দ থেকে বঞ্চিত হবে না। দোসরা অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর সার্ধ শততম জন্মবার্ষিকী আয়োজনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বাপুর মহান আদর্শকে অভিনব উপায়ে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে ছড়িয়ে দেওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নেওয়ার জন্য শিক্ষক সমাজের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন। স্বচ্ছ ভারত মিশনকে সফল করার ক্ষেত্রে শিক্ষক মহল যে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে তার জন্য প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শিক্ষকদের তাঁদের পছন্দমতো যে কোন বিষয় বেছে নিয়ে স্থানীয় জনগোষ্ঠীকে তার সঙ্গে যুক্ত করে সমাজের চারপাশের মানুষের জীবনে সদর্থক পরিবর্তন আনার আহ্বান জানান। মাননীয়রাষ্ট্রপ্রধানগণ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ এবং সংবাদমাধ্যমের বন্ধুরা, (অষ্টম)ব্রিক্‌স শীর্ষ সম্মেলন শেষ হল কিছুক্ষণ আগেই । গোয়ারমতো একটি সুন্দর রাজ্যে প্রেসিডেন্ট জি, প্রেসিডেন্ট জুমা, প্রেসিডেন্ট টেমার এবং প্রেসিডেন্টপুতিনকে স্বাগত জানানোর সুযোগ পেয়ে আমরা নিজেদের সম্মানিত বোধ করছি। সম্মেলনেরতিনটি পর্বের আলোচনা ছিল বিশদ, বিষয়সমৃদ্ধ ও ফলপ্রসূ। সকালেসন্ত্রাসবাদ, বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং আন্তর্জাতিক শাসন ও পরিচালন ব্যবস্থারকাঠামো সংস্কার প্রসঙ্গে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আমরা মতবিনিময় করেছি। বর্তমানপর্যায়ের ব্রিক্‌স সহযোগিতা সম্পর্কে পর্যালোচনার সুযোগেরও আমরা সদ্ব্যবহার করেছি। পূর্ণাঙ্গঅধিবেশনে আগামী বছরগুলিতে ব্রিক্‌স-এর ভবিষ্যৎ সম্প্রসারণের চিন্তাভাবনা ওসম্ভাবনার ওপরও আলোকপাত করেছি আমরা। আমাদেরআলোচনা ছিল সফল এবং ভবিষ্যৎমুখী । শুধু তাই নয়, ব্রিক্‌স-এর এক দশক উদ্‌যাপনেরমুহূর্তে এই আলোচনা ছিল যথেষ্ট সময়োচিত। ব্রিক্‌স বাণিজ্য পরিষদের আলোচনাপর্বটিআমরা সদ্য সমাপ্ত করে এসেছি। জাতীয়উন্নয়ন ব্যাঙ্ক (এনডিবি) প্রথম বছরেই যে সমস্ত অর্থবহ কাজের সঙ্গে যুক্ত হয়েছে তারএকটি বিবরণ আমরা পেয়েছি ঐ ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্টের কাছ থেকে। আমিএকথা ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে গোয়া ঘোষণার যে খসড়া আমরা গ্রহণ করেছি ব্রিক্‌সসম্পর্কে এবং আন্তর্জাতিক বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা ও সমন্বয়ের একটি সুসংবদ্ধচিন্তাভাবনার হদিশ রয়েছে তাতে । শীর্ষসম্মেলনকালে যে সমস্ত বিষয় ব্রিক্‌স নেতৃবৃন্দের সর্বোচ্চ মনোযোগ আকর্ষণ করেছে সেসম্পর্কে কিছু কথা আমি এখানে তুলে ধরতে চাই। আমাদেরসমাজ এমনকি সামগ্রিকভাবে মানবজীবনের ক্ষেত্রেও সন্ত্রাসের এই ঘটনা উদ্বেগজনক। সন্ত্রাসেরহুমকির মোকাবিলায় ঐক্যবদ্ধভাবে এবং যথেষ্ট চিন্তাভাবনার সঙ্গে ব্রিক্‌স-এর যে কাজকরে যাওয়া প্রয়োজন সে সম্পর্কেও আমাদের সকলের মত ছিল এক ও অভিন্ন। হিংসাও সন্ত্রাসের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের আশ্রয়, সমর্থন ও মদত দিয়ে যারা সাহায্য করছেতারা যে সন্ত্রাসবাদীদের মতোই আমাদের পক্ষে ভয়ঙ্কর বিপজ্জনক সে কথাও আমরা মতৈক্যেরসঙ্গে স্বীকার করে নিয়েছি। আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় মত ও পথের ক্ষেত্রে যে ঐক্যে আমরা পৌঁছতেপেরেছি, তার পরিপ্রেক্ষিতে ভারত আজ প্রকৃতই খুশি। বিশ্বঅর্থনীতিকে আবার সঠিক পথে ফিরিয়ে আনার বিষয়টিও ছিল আমাদের আলোচ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত। ২০০৮সালের আর্থিক সঙ্কটের পরবর্তী পর্যায়ে বিশ্ব অর্থনীতির বিকাশে ব্রিক্‌স সদস্যদেশগুলির ইতিবাচক অবদানের কথাও স্বীকৃতি লাভ করেছে আমাদের আলোচনাকালে। দীর্ঘমেয়াদিপরিকাঠামো প্রকল্প, বড় ধরনের অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগুলির মধ্যে সমন্বয়সাধন, বিকাশেরহার বৃদ্ধি এবং বিশ্ব বাণিজ্য ও উৎপাদন শিল্পকে আবার নতুন উদ্যম ও উৎসাহের সঙ্গেচাঙ্গা করে তুলতে সরকারি বিনিয়োগ যে একান্ত জরুরি সে কথাও উপলব্ধি করেছি আমরা । বহুপাক্ষিকবাণিজ্যিক কাঠামোর মূল স্তম্ভ হিসেবে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার মূল ভূমিকার বিষয়টিতেওজোর দিয়েছি আমরা। আমরাস্বীকার করেছি যে অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং পরিবেশ সুরক্ষার মধ্যে ভারসাম্য রক্ষাএকান্ত জরুরি। প্যারিসজলবায়ু চুক্তি দ্রুত সম্পাদনের বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছি আমরা। জাতীয়উন্নয়ন ব্যাঙ্কের প্রথম বছর পূর্তি উপলক্ষে এই সংস্থার ভূমিকার প্রশংসাও করেছিআমরা। আমরাএই মর্মে একমত হয়েছি যে পরিকাঠামো, প্রযুক্তি এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিক্ষেত্রে এনডিবি-র ভূমিকা নিরন্তর রাখা প্রয়োজন। ব্রিক্‌সকৃষি গবেষণা মঞ্চ, ব্রিক্‌স রেল গবেষণা নেটওয়ার্ক, ব্রিক্‌স ক্রীড়া পরিষদ এবংযুবকেন্দ্রিক বিভিন্ন মঞ্চ প্রতিষ্ঠার প্রশ্নেও আমাদের মত ছিল এক ও অভিন্ন। আমরাসকলেই সোচ্চার হয়েছি বিশ্বের আর্থিক তথা অর্থনৈতিক কাঠামোর সংস্কারের সমর্থনে।আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারে নতুন ও উন্নয়নশীল অর্থনীতিগুলির ভূমিকা যে আরওসম্প্রসারিত হওয়া প্রয়োজন, সে কথাও মতৈক্যের সঙ্গে ঘোষণা করেছি আমরা। বিশ্বেরআর্থিক কাঠামোকে মজবুত করে তুলতে একটি ব্রিক্‌স রেটিং এজেন্সি দ্রুত গড়ে তোলারবিষয়টিতে সম্মতি জানিয়েছি আমরা। জি-২০গোষ্ঠীর মধ্যে আমরা যাতে আরও সমন্বয়বদ্ধ হয়ে উঠতে পারি সে বিষয়েও মতৈক্য প্রকাশকরেছি আমরা। আমাদেরগুরুত্বের আরেকটি বিষয় ছিল ব্রিক্‌স সদস্য দেশগুলির জনসাধারণের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংযোগগড়ে তোলা। জনসাধারণেরসঙ্গে সংযোগকে আমাদের প্রচেষ্টার একটি স্তম্ভ হিসেবে গড়ে তুলতে চাই আমরা। শান্তিও নিরাপত্তার বিষয়গুলিতেও শলাপরামর্শ এবং সহযোগিতার বাতাবরণকে শক্তিশালী করে তুলতেপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ ব্রিক্‌স সদস্য দেশগুলি । গোয়াশীর্ষ সম্মেলনের এই সমস্ত উল্লেখযোগ্য বিষয় হয়ে উঠবে বিমস্‌টেক দেশগুলির কাছে তুলেধরার মতো অন্যতম বিষয়। প্রথমব্রিক্‌স-বিমস্‌টেক প্রচার সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে আর কিছুক্ষণ পরেই। এরফলে ব্রিক্‌স ও বিমস্‌টেক নেতৃবৃন্দের কাছে এক বিশেষ সুযোগ আজ উপস্থিত ঘনিষ্ঠসহযোগিতা ও সমন্বয়ের বিষয়গুলিতে আলোচনা ও মতবিনিময়ের। বিশ্বজনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের বাসভূমি হল ব্রিক্‌স ও বিমস্‌টেক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি।সুতরাং, এই সমস্ত দেশের জনসাধারণের কল্যাণে অফুরন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনার দ্বার আজউন্মুক্ত এই গোষ্ঠী দুটির কাছে। পরিশেষে,ব্রিক্‌স সদস্য দেশগুলি থেকে আগত নেতৃবৃন্দকে আমি ধন্যবাদ জানাই অষ্টম ব্রিক্‌সশীর্ষ সম্মেলনকে সফল করে তোলার লক্ষ্যে তাঁদের নিঃশর্ত সমর্থনের জন্য। বিভিন্ন অনগ্রসর শ্রেণী ও সম্প্রদায়ের সঙ্গে যুক্ত বিষয়গুলি নিয়ে গঠিত ঐ কমিটি সংশ্লিষ্ট সব পক্ষ যেমন- রাজ্য সরকার, রাজ্য অনগ্রসর শ্রেণী কমিশন, বিভিন্ন সাম্প্রদায়িক সংগঠন ও সাধারণ মানুষের সঙ্গে বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা ও বৈঠক করেছে। এছাড়াও, ঐ কমিশন উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে অধ্যয়নরত অনগ্রসর শ্রেণীর জাতিভিত্তিক ছাত্রছাত্রীর সংখ্যার পাশাপাশি কেন্দ্রীয় সরকারি দপ্তর, রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্হা, রাষ্ট্রায়ত্ব ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে নিয়োগ সংক্রান্ত জাতিভিত্তিক তথ্য রেকর্ড করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভারত সেবাশ্রম সংঘের শতবর্ষ উদযাপনউৎসবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভাষণ দেন। অনুষ্ঠানটি শিলং-এ আয়োজিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে ভারত সেবাশ্রম সংঘের সাধারণ সম্পাদক শ্রীমৎস্বামী বিশ্বাত্মানন্দজি মহারাজ ভারতের গৌরবময় আধ্যাত্মিকতা ও সেবার ঐতিহ্যসম্পর্কে বলেন। সমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী গুজরাটে তিনি যখন ভারত সেবাশ্রমসংঘের সঙ্গে কাজ করেছিলেন, তখনকার কথা স্মরণ করেন। তিনি ভারত সেবাশ্রম সংঘকেশতবর্ষ উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, এই সংগঠনে সেবা ও শ্রম এই দুই গুণের সমন্বয়ঘটেছে। তিনি বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের এই সংগঠনের কাজকর্ম এবং বিপর্যয়ের সময় এরভূমিকা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। প্রধানমন্ত্রী পুঁথি ইত্যাদিতে যেমন বলা আছে তেমনভাবেই গরিব ও দুস্থদেরসেবা করার তাৎপর্য ব্যাখ্যা করেন। তিনি বলেন, ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতিষ্ঠাতা এক শতাব্দী আগে সামাজিকন্যায়ের কথা বলেছিলেন এবং তিনি এই উদ্দেশ্যেই সংঘ গড়ে তোলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি একটি মিথ গড়ে তোলা হচ্ছে যে, সেবা আরআধ্যাত্মিকতা দুটি পৃথক বিষয়। তিনি বলেন, ভারত সেবাশ্রম সংঘ তার কাজের মধ্য দিয়েএই মিথটি ভেঙে দিতে পেরেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন – ভক্তি, শক্তি আর জনশক্তিরমাধ্যমে স্বামী প্রণবানন্দজি সামাজিক উন্নয়ন ঘটিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী ভারত সেবাশ্রম সংঘের প্রতি উত্তর-পূর্বাঞ্চলে ‘স্বচ্ছাগ্রহ’বা পরিচ্ছন্নতা অর্জনের জন্য কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি উত্তর-পূর্বাঞ্চলেরউন্নয়নে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা বলেন এবং বলেন যে, যোগাযোগ ও পরিকাঠামোর ওপর যেনজর দেওয়া হচ্ছে, তা এই অঞ্চলকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার দুয়ার হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জাতীয় ক্রীড়া দিবস উপলক্ষে ক্রীড়া প্রেমীদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “জাতীয় ক্রীড়া দিবসে সমস্ত ক্রীড়া প্রেমীদের শুভেচ্ছা। অসামান্য ও কিংবদন্তী হকি খেলোয়াড় মেজর ধ্যানচাঁদজির জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। সুস্বাস্থ্যের ভারত গড়ে তুলতে খেলাধূলা ও দৈহিক ফিটনেস বজায় রাখার ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিতে আমি সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানাই। বিভিন্ন ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় যাঁরা ভারতের প্রতিনিধিত্ব করেছেন, তাঁদের আমি অভিনন্দন জানাই। এদের কঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ় সংকল্পের দরুণ বহু সাফল্য অর্জিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ২৩ সেপ্টেম্বর, ২০১৫ থেকে ২৯ সেপ্টেম্বর ২০১৫ পর্যন্ত আয়ারল্যান্ড ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর করবেন। প্রায় ৬০ বছর পর ভারতের কোন প্রধানমন্ত্রী আয়ারল্যান্ড সফরে যাচ্ছেন। আয়ারল্যান্ডে আমি শ্রী এন্ডা কেনি, আয়ারল্যান্ডের তাওইসীচ-এর সঙ্গে বৈঠক করব। আমরা আগামীদিনে আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে অর্থনৈতিক এবং দু’দেশের মানুষে মানুষে সম্পর্ক জোরদার করার আশা করি। আয়ারল্যান্ডে বসবাসকারী ভারতীয়দের সঙ্গেও আমি মতবিনিময় করব। ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৫ তারিখে আমার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফর শুরু হবে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে আমার বিগত সফর এবং এ বছরের গোড়ায় রাষ্ট্রপতি ওবামার ভারত সফরের ভিত্তিতে অর্জিত সাফল্যের ওপর পর্যাপ্ত কৃতিত্ব অর্জনের লক্ষ্যেই এই সফর নির্ধারিত। আমি এক ঐতিহাসিক উপলক্ষে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে যাচ্ছি যখন রাষ্ট্রসঙ্ঘ তার ৭০তম বার্ষিকী উদযাপন করছে। ভারত রাষ্ট্রসঙ্ঘকে বিরাট গুরুত্ব দিয়ে থাকে। গত জুলাই মাসে আমি রাষ্ট্রসঙ্ঘের আলোচ্যসূচি এবং সংস্কার সম্পর্কে ভারতের স্বপ্নের রূপরেখা ব্যাখ্যা করে ১৯৩টি দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের কাছে চিঠি লিখেছিলাম। বহু দেশের কর্ণধার চিঠির জবাবে আমাদের সেই দৃষ্টিভঙ্গির প্রশংসা করেছেন। নিউ ইয়র্কে আমি ২০১৫-র পরবর্তী সকলকে সামিল করে উন্নয়নের নতুন কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক গ্রহণ উপলক্ষে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সকলকে সামিল করে উন্নয়নমূলক শীর্ষ বৈঠকে ভাষণ দেব। সকলকে সামিল করে উন্নয়নের প্রশ্নে ভারতের স্বপ্নের সঙ্গে এবং আমাদের দিশারী কর্মসূচিগুলির সঙ্গে নতুন ঐ লক্ষ্যগুলির ঘনিষ্ঠ সাযুজ্য আছে। আমি রাষ্ট্রপতি ওবামা আয়োজিত শান্তিরক্ষা বিষয়ক এক শীর্ষ সম্মেলনেও যোগ দেব। ভারত রাষ্ট্রসঙ্ঘ শান্তিরক্ষী বাহিনীতে ইতিহাসগত ভাবেই বৃহত্তম শরিকদের একজন। রাষ্ট্রসঙ্ঘ শান্তিরক্ষা মিশনে ১ লক্ষ ৮০ হাজারেরও বেশি ভারতীয় সেনা এ পর্যন্ত যোগ দিয়েছে যা অন্য যেকোন দেশের থেকে বেশি। আমাদের শান্তিরক্ষী সেনা যে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ছড়িয়ে পড়ে প্রতিকূল পরিস্থিতিতেও শান্তিরক্ষার দিকটি সুনিশ্চিত করছে সেজন্য আমরা গর্বিত। শান্তির জন্য যেসব নরনারী তাদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, আমি তাঁদের প্রতিও শ্রদ্ধা জানাব। আর শান্তিরক্ষার প্রয়াসকে কিভাবে আরও কার্যকরী করে তোলা যায় সে সম্পর্কে আমি নিজের ভাবনা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নেব। এ বছর নিউ ইয়র্কে ভারত জি-৪ গোষ্ঠীভুক্ত নেতাদের এক শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করবে যেখানে মূল বিষয়টিই হবে রাষ্ট্রসঙ্ঘ নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৭০তম বার্ষিকী সংস্কার নিয়ে আলোচনায় গতি আনার উপযুক্ত মুহূর্ত। সাম্প্রতিককালে রাষ্ট্রসঙ্ঘ সাধারণ পরিষদ শেষ পর্যন্ত ২০ বছরেরও বেশি পরে একটি নথি গ্রহণ করেছে যেটি এ বিষয়ে আনুষ্ঠানিক আলোচনার ভিত্তি বলে বিবেচিত হবে। এই সফরকালে বিভিন্ন বিশ্ব নেতার সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ হবে। এছাড়া, শীর্ষস্থানীয় লগ্নিকারী ও আর্থিক ক্ষেত্রের সংস্থার সঙ্গেও আমার মতবিনিময় হবে। ফরচুন ৫০০ তালিকার প্রধান সংস্থাগুলি ভারতে বিনিয়োগ সংক্রান্ত সুযোগ নিয়ে আলোচনার জন্য আমি যে ভোজসভার আয়োজন করেছি সেখানে উপস্থিত থাকবে। গত বছর থেকেই আমরা মার্কিন বাণিজ্য ক্ষেত্রের নেতৃস্থানীয়দের সঙ্গে আলোচনা করে আসছি, আর তার ফলাফল যথেষ্ট আশাব্যঞ্জক। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে আমি ২৬ ও ২৭ সেপ্টেম্বর পশ্চিম উপকূল সফর করব যেখানে আমার নানান কর্মসূচিতে যোগ দেওয়ার কথা। প্রায় ৩৩ বছর পর ভারতের কোন প্রধানমন্ত্রী নতুন সূচনা, উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির পীঠস্থান বলে পরিচিত পশ্চিম উপকূল সফরে যাচ্ছেন। টাউন হল-এ ফেসবুকের সদর দপ্তরে শ্রী মার্ক জুকেরবার্গ-এর সঙ্গে আমার এক প্রশ্নোত্তরমূলক অনুষ্ঠানে অংশ নেওয়ার কথা। আমরা বিশ্বজোড়া কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করব এবং ভারত সংক্রান্ত বিষয় নিয়েও কথা বলব, বিশেষ করে, অর্থনীতি ও সমাজ সম্পর্কিত বিষয়ে। এটা এমনই একটা টাউন হল যেটা আপনার মিস করা উচিত হবে না। আমি ইতিমধ্যেই আপনাদের ফেসবুকের মাধ্যমে অথবা ‘নরেন্দ্র মোদী মোবাইল অ্যাপ’-এর মাধ্যমে আপনাদের প্রশ্নগুলি আমার সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছি। এছাড়াও, আমি গুগল-এর অ্যালফাবেট ক্যাম্পাসে সাম্প্রতিক কিছু প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন প্রত্যক্ষ করব এবং টেসলা মোটর সংস্থা পরিদর্শন করব। আমি ইউ এস ডক এবং স্ট্যানফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সংক্রান্ত রাউন্ড টেবল বৈঠকে ভাষণ দেব। তবে, যে অনুষ্ঠানটি আমি অত্যন্ত উৎসাহিত সেটা হল, ‘ভারত-মার্কিন স্টার্ট আপ কানেক্ট’। ভারত নানা ধরনের ক্ষেত্রে স্টার্ট আপের এক প্রধান কেন্দ্র হয়ে উঠছে আর আমরা এটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমরা স্টার্ট আপ ক্ষেত্রে আমাদের উদ্ভাবন ক্ষমতা কেমন সেটা সারা বিশ্বকে দেখাতে চাই। এই অনুষ্ঠানে ভারতের নানা ধরনের স্টার্ট আপের একটি গোষ্ঠী তাদের উদ্ভাবন তুলে ধরবে এবং আমেরিকার গতিশীল স্টার্ট আপ শিল্পের সঙ্গে অংশীদারিত্বে যুক্ত হবে। স্যান জোস-এ, আমি ২৭ সেপ্টেম্বর সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের সঙ্গে মতবিনিময় করব। প্রবাসী ভারতীয়রা ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে জোরদার করতে চেষ্টার কোন ত্রুটি রাখেনি। আমরা প্রবাসী ভারতীয়দের সাফল্য সম্পর্কে অত্যন্ত গর্বিত, কেননা, দু’দেশের সমাজেই এর বিরাট অবদান রয়েছে। সোমবারফিলিপিন্স-এর লস ব্যানোজ-এ আন্তর্জাতিক ধান গবেষণা সংস্থা (আইআরআরআই)পরিদর্শনে যানপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আইআরআরআইপরিদর্শনকালে এই প্রতিষ্ঠানটিতে কর্মরত কয়েকজন ভারতীয় বিজ্ঞানীর সঙ্গেও আলোচনা ওমতবিনিময়ের মাধ্যমে মিলিত হন তিনি। ম্যানিলারমহাবীর ফিলিপিন ফাউন্ডেশনও এদিন পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী। মহাবীর বিকলাঙ্গসহায়তা সমিতির সঙ্গে সহযোগিতাক্রমে যাঁদের অঙ্গচ্ছেদ ঘটেছে, তাঁদের কাছে জয়পুর ফুট পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এই ফাউন্ডেশনএক দৃষ্টান্তমূলক কাজ করে চলেছে। সংসদের এই গুরুত্বপূর্ণ অধিবেশনের অন্তিম পর্যায় আজ শুরু হচ্ছে। এই অধিবেশনে মূলত নানা আর্থিক বিষয় অগ্রাধিকার পেয়েছে। এর প্রথম পর্ব অত্যন্ত ফলপ্রসূ ছিল। দলমত নির্বিশেষে সাংসদদের সক্রিয় অংশগ্রহণে এই অধিবেশনে অনেক গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হয়েছে। এই সাফল্যের তৃপ্তি সকল সাংসদের চেহারায় পরিস্ফুট হয়ে উঠতে দেখেছি। “ঝাড়খণ্ডেরএকটি খনিতে প্রাণহানির ঘটনায় আমি শোকাহত। যাঁরা এখনও খনির ভেতর আটকে রয়েছেন,তাঁদের জন্য আমি প্রার্থনা জানাই। সেখানকার পরিস্থিতি সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রী রঘুবরদাসের সঙ্গে কথা বলেছি আমি। বুধবার এখানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিতকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অন্ধ্রপ্রদেশের জন্য বিশেষ আর্থিক সহায়তাদানেরপ্রস্তাবটি মঞ্জুর করা হয়। এর আওতায় বাইরের সাহায্যপুষ্ট প্রকল্পগুলিতে বিশেষবরাদ্দ এবং পোলাভারাম প্রকল্পে জলসেচ সম্পর্কিত সুযোগ-সুবিধা প্রসারে অর্থ সহায়তারসংস্থান রয়েছে। প্যালেস্তাইন, সংযুক্ত আরব আমীরশাহী এবং ওমান সফরের প্রাক্কালে প্রদত্ত এক বিবৃতিতেপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন : “৯-১২ ফেব্রুয়ারি আমি এক দ্বিপাক্ষিক সফরে প্যালেস্তাইন, সংযুক্ত আরবআমীরশাহী এবং ওমানে যাচ্ছি। ২০১৫ সাল থেকে শুরু করে এই নিয়ে পঞ্চমবার আমি উপসাগরীয় এবং পশ্চিম এশীয়অঞ্চল সফর করব। বৈদেশিক সহযোগিতা প্রসারের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলটি রয়েছে আমাদের একবিশেষ অগ্রাধিকারের তালিকায়। এই দেশগুলির সঙ্গে বিভিন্ন দিক থেকে আমাদের বেশঘনিষ্ঠ সম্পর্ক রয়েছে। জর্ডনের মধ্য দিয়ে যাত্রা করে আমার এই সফর সূচি শুরু হবে ১০ ফেব্রুয়ারিপ্যালেস্তাইনে। এইভাবে আমাকে তাঁদের দেশের মধ্য দিয়ে যাত্রার সুযোগ করে দেওয়ারজন্য আমি কৃতজ্ঞ জর্ডনের মাননীয় রাজা দ্বিতীয় আবদুল্লার কাছে। ০৯ ফেব্রুয়ারিআম্মানে তাঁর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎকার ঘটবে। ভারত থেকে এই প্রথম একজন প্রধানমন্ত্রী প্যালেস্তাইন সফরে যাচ্ছেন। এই সমস্ত ক্ষেত্রে এবং আরও নানা বিষয়ে আমাদের অগ্রগতিরপ্রশ্নটি সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর উপ-রাষ্ট্রপ্রধান তথা প্রধানমন্ত্রী এবং দুবাইয়েরশাসক মাননীয় শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল মক্তুম এবং আবুধাবির যুবরাজ মাননীয় শেখ মহম্মদবিন জায়েদ আল নাইয়ানের সঙ্গে আয়োজিত বৈঠকগুলিতে আলোচনা করব। তাই ওমানের মাননীয় সুলতান এবং অন্যান্য বিশিষ্ট নেতাদের সঙ্গেই আমিকথা বলব। ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদার করে তোলার বিষয়ে আমিআলাপ-আলোচনা করব ওমানের বিশিষ্ট বাণিজ্য কর্তাদের সঙ্গে। আমি আগেই বলেছি যে, ওমান হ’ল আমাদের এক নিবিড় সামুদ্রিক প্রতিবেশী, যাদেরসঙ্গে আমাদের রয়েছে খুবই সুন্দর এক সম্পর্ক। প্রধানমন্ত্রী হিসাবে ১১ থেকে ১২ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত সেখানে সফরের সুযোগ পাওয়ায় আমি আনন্দিত। দু’দেশের জনসাধারণেরমধ্যে আদান-প্রদানের সম্পর্কটির মূল প্রোথিত রয়েছে বহু শতাব্দীর গভীরে। ১১ ফেব্রুয়ারির সন্ধ্যায় ওমানের মাননীয় সুলতানের সঙ্গে আমার বৈঠক হওয়ার কথারয়েছে। ঐ দেশের মন্ত্রী পরিষদের উপ-প্রধানমন্ত্রী মাননীয় সঈদ ফাহ বিন মাহমুদ আলসঈদ এবং আন্তর্জাতিক সম্পর্ক ও সহযোগিতা বিষয়ক উপ-প্রধানমন্ত্রী মাননীয় সঈদ আশাদবিন তারিক আল সঈদ-এর সঙ্গেও বৈঠকে মিলিত হব আমি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের পর্যালোচনাএবং আমাদের ঐতিহ্যবাহী শক্তিশালী সম্পর্কের প্রসার – এই দুটি বিষয় রয়েছে আমাদেরআলোচ্যসূচির মধ্যে। ১২ ফেব্রুয়ারি তারিখে ভারতের সঙ্গে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক জোরদারকরে তোলার বিষয়ে আমি আলোচনা করব ওমানের বিশিষ্ট বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে। ওমান এবং সংযুক্ত আরব আমীরশাহী – দুটি দেশেই সেখানকার ভারতীয় বংশোদ্ভূতবিরাট জনসংখ্যার প্রতিনিধিদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ আমি লাভ করব। ঐ দেশগুলির সমৃদ্ধি ও অগ্রগতি প্রচেষ্টায় তাঁরা হলেন এক সক্রিয়অংশীদার। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সকাল ৭-৩০ মিনিটে লালকেল্লার প্রাকার থেকে ভাষণ দেবেন জাতির উদ্দেশে। স্বাধীনতা দিবস পালনের অঙ্গ হিসেবে বেশ কিছু অনুষ্ঠানেরও আয়োজন করা হয়েছে এদিন। গত৯ আগস্ট স্বাধীনতা সংগ্রামী চন্দ্রশেখর আজাদের মধ্যপ্রদেশের জন্মস্থানে ‘তিরঙ্গাযাত্রা’র সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশের সর্বস্তরেরজনসাধারণের মধ্যে দেশাত্মবোধকে উজ্জীবিত করার লক্ষ্যেই এই যাত্রার আয়োজন। ভারতীয়সশস্ত্র বাহিনীও অংশগ্রহণ করেছে এই উৎসবে। উৎসব প্রাঙ্গণে গড়ে তোলা হয়েছে নানাধরনের খাদ্যসম্ভারের ৫০টি স্টল, হস্তশিল্প মেলা, বিভিন্ন রাজ্যের মণ্ডপ ওসাংস্কৃতিক প্রদর্শনী ইত্যাদি। এই উপলক্ষে ‘আজাদি ৭০ সাল – ইয়াদ করো কুরবানি’শীর্ষক একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও ব্যবস্থা করেছে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক। স্বাধীনতাদিবস উদযাপনকে জনসাধারণের উৎসবে পরিণত করতে কয়েকটি অভিনব উদ্যোগও গ্রহণ করা হয়েছেসরকারের পক্ষ থেকে। রাজধানীর সিরি ফোর্ট প্রেক্ষাগৃহে গত ১২ আগস্ট থেকে শুরু হয়েছেস্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে সপ্তাহব্যাপী এক চলচ্চিত্র উৎসব। একই দিনে সূচনা হয়েছেস্বাধীনতা উৎসবের থিম সঙ্গীত ‘তিরঙ্গা যাত্রা’র। বিদ্যালয়ের ছেলে-মেয়েদেরউৎসাহিত করা হয়েছে নিজের নিজের শহর ও গ্রামের মণীষীদের স্মারক ও জন্মস্থানগুলিপরিদর্শনের। আগামী ২৩ আগস্ট দেশের ১৫ লক্ষ স্কুল এবং ৪০ হাজার কলেজে একইসঙ্গেজাতীয় সঙ্গীত পরিবেশন করা হবে। এই উপলক্ষে ছাত্রছাত্রীদের জন্য ক্রীড়াপ্রতিযোগিতারও আয়োজন করা হয়েছে। বুধবার এখানে প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সম্পর্কে বিস্তারিতআলোচনার পর এই অনুমোদনদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। সরকারি প্রশাসন ও পরিচালনের ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর গুরুত্ব দিয়ে শ্রী মোদী বলেন, সরকারি কাজকর্মে প্রযুক্তির প্রসার ও উন্নয়নের জন্য তরুণ আধিকারিকদের দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। সরকারি পদাধিকার বলে কে উচ্চপদে আসীন বা কেঅধনস্ত আধিকারিক সে সম্পর্কে ভয়, ভীতি বা চিন্তা-ভাবনা না করে কেন্দ্রীয় সরকারের সহকারি সচিব পদে যুক্ত থাকা কালে আগামী তিন মাস বরিষ্ঠ ও উঁচুতলার আধিকারিকদের সঙ্গে নির্ভয়ে ও নির্দ্বিধায় কথাবার্তা বলার জন্য তরুণ আধিকারিকদের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রীনগর রিং রোডের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন তিনি। এই উপলক্ষে এক জনসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে, বিগত চার বছরে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের জন্য তাঁর জম্মু ও কাশ্মীর সফরে আসার কথা স্মরণ করেন। তিনি আরও বলেন, রমজান মাস ইসলাম ধর্মের প্রর্বতক মোহাম্মদ-এর শিক্ষা ও বার্তা স্মরণ করার সময়। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, জম্মু-কাশ্মীরে বিদ্যুতের চাহিদা পূরণে ৩৩০ মেগাওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন কিষাণগঙ্গা জলবিদ্যুৎ প্রকল্পটি সদূরপ্রসারী হবে। এর সূত্রে গ্রাহক পরিষেবার উন্নয়ন সহ আর্থিক কর্মকাণ্ড আরও প্রসারিত হবে। ভারত ও বেলজিয়াম সরকারের মধ্যে শক্তি ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় ও আঞ্চলিক স্তরে সহযোগিতা নিয়ে স্বাক্ষরিত সমঝোতা পত্রে (মৌ) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে| বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে এতে অনুমোদন দেওয়া হয়| এর ফলে, যোগাযোগ এবং আবহাওয়া সংক্রান্ত ক্ষেত্রে ২ টনের কৃত্রিম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের ক্ষেত্রে দেশ স্বয়ংসম্পূর্ণ হবে। প্রধানমন্ত্রীশেখ হাসিনাকে ভারতে স্বাগত জানাতে পেরে আমি বিশেষভাবে আনন্দিত। এই উপলক্ষে আমিআপনাকে এবং বাংলাদেশের জনসাধারণকে জানাই শুভ নববর্ষের প্রীতি ও শুভেচ্ছা। আমাদেরদ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের সবক’টি বিষয়ই সম্পর্কেই মাননীয় শেখ হাসিনার সঙ্গে আমারআজকের বিশদ আলোচনা যথেষ্ট সফল হয়েছে বলেই আমার বিশ্বাস। আমাদের সহযোগিতারকর্মসূচিতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলির দিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন বলে আমরা দু’জনেইসহমত ব্যক্ত করেছি। আমাদের এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে নতুন নতুন পথেরসন্ধান ও সুযোগ অন্বেষণের ওপরও বিশেষ জোর দিয়েছি আমরা। বৈদ্যুতিন ক্ষেত্র, তথ্যপ্রযুক্তি, সাইবার নিরাপত্তা, মহাকাশঅনুসন্ধান, অসামরিক পরমাণু শক্তি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিতে আমরাএকযোগে কাজ করে যেতে আগ্রহী। আমাদেরসহযোগিতার সুফলগুলি যাতে দু’দেশের জনসাধারণের কল্যাণে নিয়োজিত হয় তা নিশ্চিত করতেপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ ভারত ও বাংলাদেশ। এর পরিপ্রেক্ষিতে আমি সানন্দে ঘোষণা করছি যেবাংলাদেশের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত প্রকল্পগুলির রূপায়ণে বিশেষ সহজ ও সুবিধাজনকস্বার্থে ৪.৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তাদানের প্রস্তাব করেছে ভারত। গত ছ’বছরেবাংলাদেশের অনুকূলে আমরা আমাদের সহায়সম্পদ বন্টন করেছি ৮ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরওবেশি। আমাদের উন্নয়নমূলক অংশীদারিত্বের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল জ্বালানিনিরাপত্তা। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধিপেয়ে চলেছে। ভারত থেকে বাংলাদেশে যে ৬০০ মেগাওয়াট বিদ্যুতের যোগান দেওয়া হচ্ছে,তাতে অতিরিক্ত ৬০ মেগাওয়াট আজ আমরা যুক্ত করতে পেরেছি। বাংলাদেশে হাইস্পিড ডিজেল সরবরাহের জন্য একদীর্ঘমেয়াদি চুক্তি সম্পাদন করেছে আমাদের তেল সংস্থাগুলি। যতদিন পর্যন্ত নাপাইপলাইন নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হচ্ছে, বাংলাদেশকে নিয়মিতভাবে তেলের যোগান দেওয়ারএক কর্মসূচিও আমরা স্থির করেছি। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে অংশগ্রহণে এগিয়ে আসতে আমরাউৎসাহদান করছি দু’দেশেরই বেসরকারি সংস্থাগুলিকে। আগামীদিনগুলিতে বাংলাদেশেরজ্বালানি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ সংক্রান্ত কয়েকটি চুক্তি সম্পাদিত হবে বলে আমরা আশা করি । বাংলাদেশেরজ্বালানি সংক্রান্ত চাহিদা মেটাতে এবং আগামী ‘২০২১ সালের মধ্যে সকলের জন্যবিদ্যুৎ’ কর্মসূচির লক্ষ্যপূরণে ভারত সাগ্রহে ও নিরন্তরভাবে সহযোগিতা করে যাবে ঐদেশের সঙ্গে। উন্নয়নেরলক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল সংযোগ ওযোগাযোগ, আঞ্চলিক পর্যায়ে বিভিন্ন অর্থনৈতিক প্রকল্পের রূপায়ণে এবং আঞ্চলিকঅর্থনীতির সার্বিক প্রসারে যা খুবই তাৎপর্যপূর্ণ। আজ এখানে পশ্চিমবঙ্গের মাননীয়ামুখ্যমন্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের উত্তরোত্তর যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও কিছু নতুনসংযোগ আমরা স্থাপন করতে পেরেছি। কলকাতা-খুলনা এবং রাধিকাপুর-বিরোল-এর মধ্যে আবারখুলে দেওয়া হয়েছে বাস ও রেল সংযোগ। অভ্যন্তরীণ জলপথের রুটগুলিকেও সর্বোচ্চ মাত্রায়ব্যবহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। উপকূল জাহাজ সম্পর্কিত চুক্তির বাস্তবায়নে আমরাগ্রহণ করেছি এক উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ । দুটি দেশের মধ্যে জলপথে পণ্য চলাচলের ক্ষেত্রেও বিশেষঅগ্রগতি আমরা আনন্দের সঙ্গেই লক্ষ্য করেছি। অদূর ভবিষ্যতে বিবিআইএন মোটর যানচুক্তিও রূপায়িত হতে চলেছে বলে আমাদের বিশ্বাস। এর মধ্য দিয়ে আঞ্চলিক পর্যায়ে সংযোগও যোগাযোগের এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা ঘটবে। আমাদেরবাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরও বৈচিত্র্যময় করে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথা আমি এবংপ্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা – উভয়েই অনুভব করেছি। এর লক্ষ্য, দু’দেশের অর্থনীতিরমধ্যে সুদূরপ্রসারী সহযোগিতা গড়ে তোলা মাত্র নয়। দক্ষতাবৃদ্ধি এবং প্রশিক্ষণ কর্মসূচির সাফল্যগুলিও প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং আমি বিশেষভাবেপর্যালোচনা করেছি। ভারতে, বাংলাদেশের ১,৫০০ সরকারি কর্মী ও আধিকারিকদের প্রশিক্ষণবর্তমানে সমাপ্তপ্রায় । আমাদের দেশের বিচার বিভাগীয় প্রতিষ্ঠানগুলিতে ঠিকএকইভাবে আমরা প্রশিক্ষণদানের ব্যবস্থা করব বাংলাদেশ বিচার বিভাগের ১,৫০০ কর্মী ওআধিকারিকদের। আমাদেরএই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক একদিকে যেমন এক সমৃদ্ধির বাতাবরণ গড়ে তুলেছে দু’দেশেরজনজীবনে, অন্যদিকে তেমনই সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থার হাত থেকে তাঁদের রক্ষা করার কাজেও তাবিশেষভাবে সচেষ্ট রয়েছে। সন্ত্রাসের হুমকি শুধুমাত্র ভারত বা বাংলাদেশের পক্ষেইনয়, সমগ্র অঞ্চলের পক্ষেই বিপজ্জনক। সন্ত্রাস দমনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দৃঢ়সঙ্কল্পের আমরা বিশেষ প্রশংসা করি। সন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে ‘কোনরকম সহনশীলতা নয়’হাসিনা সরকারের এই নীতি আমাদের সকলকেই উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত করে। আমাদেরপারস্পরিক কর্মপ্রচেষ্টার মূল কেন্দ্রবিন্দুতে দু’দেশের জনসাধারণের শান্তি,নিরাপত্তা এবং উন্নয়নকেই আমরা গুরুত্ব দিয়ে চলেছি। এই ঋণ সহায়তা প্রসারের ক্ষেত্রে বাংলাদেশেরচাহিদা ও অগ্রাধিকারগুলিকেই আমরা বিশেষভাবে গুরুত্ব দেব। আমাদেরদুটি দেশেরই রয়েছে এক সুদীর্ঘ স্থল সীমান্ত। ২০১৫-র জুন মাসে আমার ঢাকা সফরকালেস্থল সীমানা চুক্তি আমরা সম্পাদন করেছি। বর্তমানে এর রূপায়ণের কাজ চলছে। আমাদেরসাধারণ স্থল সীমান্তের পাশাপাশি অনেকগুলি নদীও বয়ে গেছে আমাদের দু’দেশের মধ্যদিয়ে। এই নদীভারতের পক্ষে যেমন গুরুত্বপূর্ণ, সমান গুরুত্বপূর্ণ বাংলাদেশ এবং ভারত-বাংলাদেশসম্পর্কের ক্ষেত্রেও। আমি খুবই আনন্দিত যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী আজ এখানেআমাদের এক সম্মানিত অতিথিরূপে উপস্থিত রয়েছেন । একথাও আমার অজানানয় যে বাংলাদেশের প্রতি তাঁর আবেগ ও অনুভূতি আমার মতোই সমান আন্তরিক। মাননীয়প্রধানমন্ত্রী, আমাদের প্রতিশ্রুতি ও নিরন্তর প্রচেষ্টা সম্পর্কে আমি আপনাকেনিশ্চিতভাবেই আশ্বাস দিতে চাই। শেখ হাসিনা, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে আপনারসরকার এবং আমার সরকার মিলিতভাবে তিস্তার জলবন্টন সম্পর্কে দ্রুত এক সমাধানের পথখুঁজে পাবে। বঙ্গবন্ধুশেখ মুজিবর রহমান ছিলেন ভারতের এক প্রিয় বন্ধু। তাঁর ছিল এক গগনচুম্বী ব্যক্তিত্ব।বাংলাদেশের এই জনকের প্রতি আমাদের গভীর শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রমের চিহ্নরূপে আমাদের এইরাজধানী নগরের একটি প্রধান সড়ক তাঁর নামেই উৎসর্গ করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর জীবন ওকর্মের ওপর যৌথ উদ্যোগে একটি চলচ্চিত্র প্রযোজনার প্রস্তাবেও আমরা সম্মত হয়েছি।ছবিটি মুক্তি পাবে ২০২০ সালে বঙ্গবন্ধুর জন্ম শতবর্ষে। প্রধানমন্ত্রী শেখহাসিনাজির সঙ্গে আমিও বঙ্গবন্ধুর ‘আনফিনিশ্‌ড মেমোয়ের্স’ বইটির হিন্দি অনুবাদপ্রকাশ করতে পেরে সম্মানিত বোধ করছি। বাংলাদেশের জন্ম দেওয়ার লক্ষ্যে তাঁর জীবন,সংগ্রাম ও অবদান ভবিষ্যৎ প্রজন্মগুলিকেও অনুপ্রেরণা যুগিয়ে যাবে। আগামী ২০২১ সালেবাংলাদেশের স্বাধীনতার সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের ওপর যৌথভাবেএক তথ্যচিত্র প্রযোজনার প্রস্তাবেও আমরা সহমত জ্ঞাপন করেছি। তাই, বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতারসম্পর্কে যুক্ত হতে পেরে আমরা বিশেষভাবে আনন্দিত। আমাদের এই সম্পর্ক গড়ে উঠেছে বহুপ্রজন্মের রক্ত ও আত্মীয়তার সূত্রে। আমাদের এই সম্পর্ক দু’দেশের জনসাধারণের জন্যএক সুরক্ষিত ও উন্নততর জীবন গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আপনাকে এবং ভারতেআগত আপনার প্রতিনিধিদলকে আরও একবার স্বাগত জানিয়ে আমি এখানেই আমার বক্তব্য শেষকরলাম। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ঐ দীর্ঘমেয়াদি চুক্তিটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কথা ছিল এ বছরের ৩১ মার্চ তারিখে। এই উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি ১০১টি ই-রিক্সা, ৫০১টি প্যাডেল রিক্সা এবং ঠেলা গাড়ি প্রাপকদের হাতে তুলে দেন। প্রাপকদের জন ধন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং এই যোজনার অধীনে রূ-পে কার্ড দেওয়া হবে। সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির বরিষ্ঠ আধিকারিকরা আজকের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন, এই উদ্যোগের মাধ্যমে বারাণসীর মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের সূচনা হল। প্রধানমমন্ত্রী বলেন, দারিদ্র্য দূরীকরণ উদ্যোগের মাত্রা এবং কাজে গতি আনার প্রয়োজন রয়েছে। দরিদ্র মানুষেরা তাঁদের ভবিষ্যত প্রজন্মের উন্নয়নের লক্ষ্যে কঠোর পরিশ্রমে ইচ্ছুক বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, কেন্দ্রীয় সরকার দরিদ্র মানুষদের স্বনির্ভরতা অর্জনে সাহায্য করতে দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী রিক্সা এবং ঠেলা গাড়ি প্রাপকদের মধ্যে কয়েকজনের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। ব্রিক্‌সদেশগুলির কাজকর্ম বিভিন্ন সময়ে নানাভাবে সম্প্রসারিত হয়েছে অর্থনৈতিককর্মপ্রচেষ্টার বিস্তৃত ক্ষেত্রে। আমাদেরসহযোগিতার সুযোগ ও সম্ভাবনা আজ বহুধা প্রসারিত : কৃষি থেকে শিল্প ও উদ্ভাবন; বাণিজ্য থেকে পর্যটন;পরিবেশ থেকে জ্বালানি শক্তি, চলচ্চিত্র থেকে ফুটবল; দক্ষতা উন্নয়ন থেকে স্মার্টনগরী এবং দুর্নীতি ও আর্থিক বিশৃঙ্খলার মোকাবিলা থেকে আমাদের সমাজ ব্যবস্থার সুরক্ষা । এইবছরটিতে ব্রিক্‌স-এর কর্মপ্রচেষ্টাকে আমরা এগিয়ে নিয়ে গিয়েছি বিভিন্ন রাজ্য ওপ্রদেশে এবং সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের জীবনের সঙ্গে তাকে যুক্ত করেছি। ব্রিক্‌সদেশগুলির অংশীদারিত্বের সম্পর্কের দশম বর্ষ উদযাপন করছি আমরা। সহযোগিতার এই একদশকের ফল যথেষ্ট মূল্যবান বলে প্রমাণিত হয়েছে। আমাদেরএই উদ্যোগ ও সাফল্যের জন্য গর্বিত আমরা। নিউডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এনডিবি) এবং কন্টিনজেন্সি রিজার্ভ অ্যারেঞ্জমেন্ট (সিআরএ)প্রতিষ্ঠা হল বাস্তবিক অর্থেই আমাদের উল্লেখ করার মতো সাফল্য। সমগ্রবিশ্ব যখন অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জেরসম্মুখীন, তখন শান্তির প্রতিশ্রুতি ও সম্ভাবনার এক আশার আলো হয়ে উঠেছে ব্রিক্‌স। আমাদেরএই প্রচেষ্টা উন্নয়নশীল বিশ্বের কাছে আজ বহু দিক থেকেই অর্থবহ হয়ে উঠেছে। গতবছর পরিবর্তন ও উন্নয়নের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক কার্যসূচি রচনার ক্ষেত্রে এক সক্রিয়ভূমিকা পালন করেছে এই গোষ্ঠী। ২০৩০সালের লক্ষ্যে গৃহীত আমাদের কার্যসূচি, প্যারিস জলবায়ু চুক্তি এবং উন্নয়ন ওবিনিয়োগ সংক্রান্ত আদ্দিস আবাবা কার্যসূচি গ্রহণ আমাদের পক্ষে শুধুমাত্রউদ্দেশ্যসাধকই নয়, ফলপ্রসূ বলেও প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্বেরশাসন তথা পরিচালন কাঠামোয় পরিবর্তন সূচনার ক্ষেত্রেও আমরা রয়েছি সামনের সারিতে। শুধুতাই নয়, এর সঙ্গে আমাদের যুক্ত করতে হবে আরও অনেক কিছুই। এইপ্রসঙ্গে আপনাদের সকলের বিবেচনার জন্য আমি কয়েকটি চিন্তাভাবনার কথা এখানে উল্লেখকরতে আগ্রহী। প্রথমত,ব্রিক্‌স-এর মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিকতা গড়ে তোলার কাজ সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকেদৃষ্টি রেখে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে। যেপ্রাতিষ্ঠানিকতা আমরা গড়ে তুলব, তা আমাদের এই অঞ্চল তথা দেশগুলির উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকাপালন করবে। এইপ্রাতিষ্ঠানিকতার মধ্যে থাকবে স্বাধীনতা ও নমনীয়তা এবং উন্নয়ন প্রচেষ্টায় আমাদেরঅগ্রাধিকার ক্ষেত্রগুলির প্রতি তা হয়ে উঠবে সংবেদনশীল। ব্রিক্‌সক্রেডিট রেটিং এজেন্সি গড়ে তোলার প্রস্তাব রূপায়ণের দিকেও আগ্রহের সঙ্গে তাকিয়েরয়েছি আমরা। ব্রিক্‌সকৃষি গবেষণা কেন্দ্র, ব্রিক্‌স রেল গবেষণা নেটওয়ার্ক এবং ব্রিক্‌স ক্রীড়া পরিষদগঠন করার কাজকেও আমরা অবশ্যই দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাব। করফাঁকি রোধে এবং কালো টাকা ও দুর্নীতির মোকাবিলায় নিয়ম-শৃঙ্খলা ও কাঠামো গড়ে তোলারপাশাপাশি আমাদের দক্ষতা ও ক্ষমতাকেও নিয়োজিত করতে হবে। করফাঁকি এবং আর্থিক বিশৃঙ্খলার সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের বিচারের কাঠগড়ায় নিয়ে যেতেতথ্য বিনিময় ব্যবস্থাকে আরও সংহত করে তুলতে হবে আমাদের। বর্তমানবাস্তবতার প্রতিফলনের স্বার্থে বিশ্বের শাসন ও পরিচালন সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলিরক্ষমতায়নের লক্ষ্যেও কাজ করে যাওয়া উচিত ব্রিক্‌স-এর। দ্বিতীয়ত,ব্রিক্‌স দেশগুলির মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত যোগাযোগের মান ও ক্ষেত্রকেওনতুন করে চিহ্নিত করতে হবে। ২০১৫সালে ব্রিক্‌স রাষ্ট্রগুলির মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের আর্থিক পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২৫০বিলিয়ন মার্কিন ডলার। আগামী২০২০ সালের মধ্যে এই মাত্রাকে ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রাস্থির করতে হবে আমাদের। এজন্যপ্রয়োজন এই পাঁচটি দেশের শিল্প ও বাণিজ্য প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করে তোলা। শুধুতাই নয়, এই সমস্ত দেশের সরকারগুলির উচিত এই প্রচেষ্টাকে পূর্ণ মাত্রায় সমর্থনযোগানো। কর এবং আমদানি সংক্রান্ত সহযোগিতার কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি চুক্তিসম্পাদনের মধ্য দিয়ে এই কাজ আমরা বেশ ভালোভাবেই শুরু করে দিয়েছি। নয়াদিল্লিতেসদ্যসমাপ্ত ব্রিক্‌স বাণিজ্য মেলা ও প্রদর্শনীকে বাণিজ্যিক বিনিময়ের একটি নিয়মিতমঞ্চ রূপে গড়ে তুলতে হবে। এইলক্ষ্যে এক সক্রিয় ভূমিকা পালন করতে পারে এনডিবি । আমাদেরক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প প্রতিষ্ঠানগুলিকে বিশ্ব শৃঙ্খলার সঙ্গে যুক্তকরার কাজেও এনডিবি এক গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্ব পালন করতে পারে। দোহা উন্নয়ন বৈঠক এবং বিশ্ববাণিজ্য সংগঠনের কেন্দ্রীয় ভূমিকা সুরক্ষিত রাখতে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের সঙ্গে আমাদেরকাজ করে যাওয়া উচিত। এরইপাশাপাশি, জি-২০, ডব্ল্যুটিও এবং অন্যান্য মঞ্চে আমাদের সহযোগিতা ও সমন্বয়েরবাতাবরণকে আরও জোরদার করে তোলা প্রয়োজন। ডব্ল্যুটিও-তেবাণিজ্যিক সুযোগ-সুবিধা পরিষেবা সম্পর্কিত একটি চুক্তির খসড়া পেশ করা হয়েছে ভারতেরপক্ষ থেকে। এরলক্ষ্য হল, উদার পরিষেবা এবং বাণিজ্যিক প্রচেষ্টার সুফলগুলিকে উন্নয়নশীল দেশগুলিরকাছে সর্বোচ্চ মাত্রায় পৌঁছে দেওয়া। এইদেশগুলির সম্মিলিত অর্থনৈতিক স্বার্থে এই প্রস্তাবে ব্রিক্‌স-এর বলিষ্ঠ সমর্থনএকান্ত জরুরি। v তৃতীয়ত,আমাদের অর্থনৈতিক রূপান্তর প্রচেষ্টার অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলির দিকে আরও বেশিকরে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। নগরায়ন,পরিকাঠামো এবং উদ্ভাবন হল ব্রিক্‌স অর্থনীতির মূল অগ্রাধিকারগুলির বিশেষ বিশেষক্ষেত্র। ভারতেরনেতৃত্বে ডিজিটাল প্রযুক্তি, স্মার্ট নগরী, নগরায়ন এবং শহরাঞ্চলগুলির মধ্যেপারস্পরিক সহযোগিতার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছি আমরা। যেবাজার পরিস্থিতির সৃষ্টি করতে চলেছি আমরা, তার ফলে আরও বহু কোটি মানুষ ইন্টারনেটব্যবহারের সুযোগ পাবেন। অর্থনীতিরপ্রাথমিক কাঠামোর পরিবর্তন ও সংস্কারের লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এইসুযোগ গ্রহণ করা উচিত আমাদের । চতুর্থত,এই দেশগুলির সমাজ ব্যবস্থাকেও সুরক্ষিত করে তোলা প্রয়োজন । সন্ত্রাসমূলককাজকর্মে অর্থের যোগান, অস্ত্র সরবরাহ, প্রশিক্ষণ এবং রাজনৈতিক সমর্থনদানের যাবতীয়প্রচেষ্টাকে সুনির্দিষ্ট পদ্ধতির মধ্য দিয়ে বানচাল করে দিতে হবে। এইবিষয়টিতে আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টাদের মধ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত পারস্পরিকসহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তোলা প্রয়োজন। আন্তর্জাতিকসন্ত্রাসের প্রশ্নে সুসংবদ্ধ প্রস্তাব গ্রহণের মাধ্যমেই প্রতিফলিত হবে সন্ত্রাসেরবিরুদ্ধে আমাদের দৃঢ় সঙ্কল্পের অভিব্যক্তি। পঞ্চমত,ব্রিক্‌স-এর মূল চালিকাশক্তিই হল জনসাধারণের মধ্যে বিনিময় কর্মসূচির ওপর গুরুত্ব। তারমধ্য দিয়ে আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্কের বলিষ্ঠতার পরিচয় মেলে। এই বিষয়টিতে আমরাএ বছর এক নতুন মাত্রা যুক্ত করার চেষ্টা করেছি। ব্রিক্‌সচলচ্চিত্র উৎসব, বাণিজ্য মেলা, পর্যটনের ব্যবস্থা, ক্রীড়া পরিষদ, ফুটবলট্যুর্নামেন্ট এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কর্মসূচির মধ্য দিয়ে কোটি কোটি তরুণ ওযুবশক্তিকে উদ্বুদ্ধ করতে হবে আমাদের সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ারলক্ষ্যে। ব্রিক্‌সসদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে এক শক্তিশালী, উজ্জ্বল ও নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তোলারলক্ষ্যে অন্যান্য ব্রিক্‌স নেতাদের মতামত শোনার জন্য এখন আমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষাকরছি। আমারএই বক্তব্য মনোযোগ দিয়ে শোনার জন্য আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। শিক্ষাক্ষেত্রেছাত্রদের ক্ষোভ ও অভিযোগ দূর করতে বিভিন্ন ব্যবস্থাকে পদ্ধতিগত করে তুলতে তিনিনির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মী ও আধিকারিকদের। স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা যাতে কোনরকমঅসুবিধার সম্মুখীন না হয় সেজন্য সম্ভাব্য সকল রকম প্রযুক্তিগত সহায়তা গ্রহণের কথাওবলেন তিনি। এই প্রসঙ্গে মহাকাশ প্রযুক্তির ব্যাপক ব্যবহার সম্পর্কে তাঁর পূর্বেরনির্দেশটির কথা স্মরণ করিয়ে দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর সাহায্যে একদিকেযেমন পরীক্ষা কেন্দ্রের সঠিক অবস্থান নির্ণয় করা সম্ভব, অন্যদিকে তেমনই এ ব্যাপারেছাত্রছাত্রীদের অন্যান্য অসুবিধাও অনেকটা দূর করা যায়। সুগম্যভারত অভিযানের অগ্রগতির বিষয়টিও ‘প্রগতি’র মঞ্চে পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।এই প্রসঙ্গে তাঁকে অবহিত করা হয় যে বিভিন্ন বিদ্যালয়, সরকারি ভবন এবং রেল স্টেশনেএখন যাতায়াতের ক্ষেত্রে অনেকটাই উন্নতি হয়েছে। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্নদপ্তরের এই উদ্যোগের বিশেষ প্রশংসা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বৃত্তি সহ শিক্ষাক্ষেত্রের অন্যান্যসুযোগ-সুবিধা ছাত্রছাত্রীদের কাছে দ্রুত পৌঁছে দিতে ৫ থেকে ১৮ বছর বয়সী শিশু ওকিশোরদের অন্তর্ভুক্তির কাজে গতি সঞ্চারের জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিকে আহ্বানজানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (১০ই ফেব্রুয়ারি) তামিলনাড়ুর তিরুপুর সফর করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী কর্মচারী রাজ্য বিমা নিগমের (ইএসআইসি) মাল্টি-স্পেশালিটি হাসপাতালের শিলান্যাস করেন। এর আগে, তিরুপুর শহরে ইএসআইসি-র যে দুটি ডিসপেন্সারি বা চিকিৎসাকেন্দ্র ছিল, মানুষ সেখানে গিয়ে চিকিৎসা পরিষেবা পেতেন। আধুনিক চিকিৎসা পরিষেবার সুযোগ পেতে হলে মানুষকে ৫০ কিলোমিটার দূরে কোয়েম্বাটোরের ইএসআইসি মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে যেতে হত। প্রধানমন্ত্রী চেন্নাইয়ের ইএসআইসি হাসপাতাল জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। ৪৭০ শয্যাবিশিষ্ট অত্যাধুনিক এই হাসপাতালটিতে মেডিসিনের যাবতীয় বিভাগে গুণগতমানের পরিষেবা পাওয়া যাবে। প্রধানমন্ত্রী ত্রিচি বিমানবন্দরে একটি নতুন সুসংবদ্ধ টার্মিনাল ভবনের শিলান্যাস করেন এবং চেন্নাই বিমানবন্দরের আধুনিকীকরণের কাজের সূচনা করেন। এই উপলক্ষে শ্রী মোদী, রাষ্ট্রায়ত্ত ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের (বিপিসিএল) এন্নোর কোস্টাল টার্মিনাল জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। এই টার্মিনাল বর্তমান টার্মিনালটির চাইতে বড় এবং উন্নত বিকল্প হয়ে উঠবে। শ্রী মোদী, চেন্নাই বন্দর থেকে চেন্নাই পেট্রোলিয়াম নিগম লিমিটেডের মানালি তৈল শোধনাগার পর্যন্ত একটি নতুন অশোধিত তেল সরবরাহ পাইপলাইনের উদ্বোধন করেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী চেন্নাই মেট্রো রেলের এজি-ডিএমএস মেট্রো স্টেশন থেকে ওয়াশারমেনপেট মেট্রো স্টেশন পর্যন্ত যাত্রীবাহী মেট্রো পরিষেবার সূচনা করেন। চেন্নাই মেট্রো লাইনের ১০ কিলোমিটার দীর্ঘ এই শাখায় যাত্রী পরিবহণ শুরু হল। এই শাখায় যাত্রী পরিষেবার সূচনার সঙ্গে সঙ্গে চেন্নাই মেট্রো প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের ৪৫ কিলোমিটার দীর্ঘ শাখা চালু হল। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে মানবসম্পদ উন্নয়ন ক্ষেত্রে সমঝোতাপত্র বা মউ স্বাক্ষরের প্রস্তাবে সায় মিলেছে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে আফগানিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক মহল ভারতের ‘স্বয়ম’ কোর্সে নাম নথিভুক্ত করতে পারবে এবং এ নিয়ে অধ্যয়নের সুযোগ পাবে। একই সঙ্গে, আফগানিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলি নতুন যে শিক্ষামূলক পাঠ্যক্রম রচনা করবে, সেগুলি ‘স্বয়ম’ পোর্টালে আপলোড করতে পারবে। ভারত সরকারের মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক ‘স্বয়ম’ কোর্স নিয়ে পঠন-পাঠনের জন্য সেদেশের ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষক মহলকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেবে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে ভারত, আফগানিস্তানের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে শিক্ষা ক্ষেত্রে ভারতের জাতীয় ডিজিটাল লাইব্রেরি, ভারচ্যুয়াল ল্যাবস্ এবং কোচিং বা প্রশিক্ষণ প্রদানের মতো যে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সংক্রান্ত উদ্যোগগুলি রয়েছে, সেগুলি ব্যবহারের সঙ্গে সঙ্গে প্রযুক্তি আদান-প্রদানের সুযোগ দেবে। মউ অনুযায়ী, ভারত ও আফগানিস্তানের বিশ্ববিদ্যালয় তথা উচ্চ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে যৌথভাবে মাস্টার ডিগ্রি কর্মসূচি চালু করার প্রস্তাবও রয়েছে। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক আফগানিস্তানের কেন্দ্রীয় উচ্চ শিক্ষা দপ্তরকে পাঠ্যসূচির মানোন্নয়ন এবং শিক্ষা কর্মীদের দক্ষতা বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করবে। এই সমঝোতার ফলে উভয় দেশই একে অপরের শিক্ষাগত যোগ্যতার মান্যতা দেওয়ার ব্যাপারে একটি চুক্তি স্বাক্ষরে সম্মত হয়েছে। এছাড়া, ভারতে শিক্ষা গ্রহণে ইচ্ছুক ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা এবং আফগান শিক্ষা কেন্দ্রগুলিতেও বিদেশি ছাত্রছাত্রীর সংখ্যা বাড়বে। শিক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত এই মউটি গুরুত্বপূর্ণ মাইল ফলক হয়ে উঠবে। মাননীয়প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুঙ্গ, সড়কেচালক ছাড়াই গাড়ি চালানোর ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর সমগ্র বিশ্বকে নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে আমিজানি। কিন্তু বর্তমানে এবং ভবিষ্যতেও আমরা সকলে নিশ্চিত থাকব একটি বিষয়ে, তা হল –ভারতের অন্যতম শুভাকাঙ্খী হিসেবে প্রধানমন্ত্রী লি রয়েছেন সিঙ্গাপুরের চালকের আসনেএবং আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসারের কাজে নেতৃত্বদানের মূল ভূমিকায় । মাননীয়প্রধানমন্ত্রী লি, আপনি ভারতের এক বিশেষ মিত্র। আমাদের সম্পর্ককে জোরদার করে তোলারক্ষেত্রে আপনার অঙ্গীকার ও অবদানের আমরা গুণগ্রাহী। আজ আপনাকে এখানে স্বাগত জানাতেপেরে আমি নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। আমরা তাঁর অভাব অনুভব করব। উৎপাদন,উদ্ভাবন, প্রযুক্তি, পরিবেশ, পরিষেবা – যাই হোক না কেন, সিঙ্গাপুর সবদিক নিয়েইচিন্তাভাবনা করে আজ, যা আগামী দিনে করবে বিশ্বের অবশিষ্ট অংশ । পারস্পরিক সহযোগিতার মধ্য দিয়ে আমাদের উচ্চাকাঙ্খাপূর্ণকার্যসূচির বাস্তবায়নে আমরা স্থির করেছি এক নীতি-নির্দেশিকা। আমাদের সহযোগিতারআরেকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল পারস্পরিক সম্মতির ভিত্তিতে গৃহীত কর্মসূচিগুলিরদ্রুত রূপায়ণ। আজ মাননীয় লি-এর সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের আকার ও বিষয়গুলিনিয়ে বিস্তারিত পর্যালোচনা করেছি আমি। আমার সিঙ্গাপুর সফরকালে প্রধানমন্ত্রী লিআমাকে দেখাতে নিয়ে গিয়েছিলেন তাঁদের কারিগরি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটিকে । পর্যটনের প্রসারে রাজস্থান সরকারেরসহযোগিতায় উদয়পুরে পর্যটন সংক্রান্ত এক উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলার প্রস্তাবটিতেওস্বাগত জানিয়েছি আমরা। নগরোন্নয়ন ও বর্জ্য ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে রাজস্থান একযোগেকাজ করে চলেছে সিঙ্গাপুরের সঙ্গে। অন্ধ্রপ্রদেশের নতুন রাজধানী শহর অমরাবতীরউন্নয়ন প্রচেষ্টায় ইতিমধ্যেই সহযোগী হয়েছে সিঙ্গাপুর। আজ স্বাক্ষরিত হয়েছে মেধা-সম্পদ সম্পর্কিত একটি চুক্তিও, যাবাণিজ্যিক কাজকর্মের ক্ষেত্রে বিনিময় ও সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারে বিশেষভাবেসাহায্য করবে। সিঙ্গাপুরে কর্পোরেট রুপি বন্ড-এর সূচনার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছিআমি এবং প্রেসিডেন্ট লি। ভারতে বড় ধরণের পরিকাঠামো উন্নয়নের চাহিদা পূরণেরক্ষেত্রে মূলধনকে কাজে লাগাতে এটি হ’ল আমাদের সহযোগিতা প্রচেষ্টায় আরেকটি পদক্ষেপ। প্রতিরক্ষাও নিরাপত্তা সহযোগিতা হ’ল আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের মূল স্তম্ভ। কারণ, তা আমাদের সমাজ ব্যবস্থার বাঁধনটিকে আলগা করে দিতে চাইছে। আমিদৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, শান্তি ও মানবতায় যাঁদের আস্থা রয়েছে, তাঁদের এই ধরণেরতৎপরতার বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ হয়ে একযোগে কাজ করে যাওয়া উচিৎ। সাইবার নিরাপত্তা সহবিভিন্ন ক্ষেত্রে এই ধরণের হুমকির মোকাবিলায় আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও মজবুতকরে তোলার বিষয়টিতেও সহমত হয়েছি আমরা। একশক্তিশালী অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি ও রূপান্তরের পথে এগিয়ে চলেছে ভারত। আমাদের এইযাত্রাপথে সিঙ্গাপুরকে মূল সহযোগী বলে মনে করি আমরা। সাম্প্রতিককালে ভারতেররূপান্তরের বিষয়টিতে উপ-প্রধানমন্ত্রী সন্মুগরত্নমের চিন্তাভাবনা থেকে বিশেষভাবেউপকৃত হয়েছি আমরা। আপনার ব্যক্তিগত মৈত্রী সম্পর্ক এবং আমাদের দ্বিপাক্ষিকসম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আপনার নেতৃত্বকে বিশেষ মূল্যবান বলে মনেকরি আমি। আরও একবার আপনাকে এবং আপনার প্রতিনিধিদলের সদস্যদের আন্তরিকভাবে স্বাগতজানাই। আপনার এই ভারত সফর সফল ও কার্যকর হয়ে উঠবে বলেই আমি গভীরভাবে বিশ্বাস করি। আপনাদেরঅনেক অনেক ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভুবনেশ্বরে এয়ারপোর্ট অথরিটি অফইন্ডিয়া (এ এ আই)-এর ১.৬ একর জমি ওড়িশা সরকারের দেয় সমপরিমাণ জমির সঙ্গে বিনিময়প্রস্তাবে সায় দিয়েছে। ওড়িশা সরকার এ এআই-এর ১.৬ একর জমির বদলে সমপরিমাণ জমি দানে এবং এ এ আই-এর ঐ জমিতে থাকাপরিকাঠামোগুলি নতুন জমিতে নিজ ব্যয়ে একইভাবে তৈরি করে দিতে সম্মত হয়েছে। এছাড়া,রাজ্য সরকারের দেওয়া জমি বর্তমান বিমানবন্দর সন্নিহিত এবং এই জমিটি এ এ আইসমান্তরাল ট্যাক্সি পথ গড়ে তোলার কাজে ব্যবহার করবে। তাই, জমির বিনিময়ে এক্ষেত্রেশুধু রাজ্য সরকার এবং এ এ আই-এর পক্ষেই উপকার হবে তা নয়, এটা জনসাধারণের ক্ষেত্রেওকল্যাণকর হবে। অন্যদিকে, ওড়িশাসরকার ভুবনেশ্বর বিমানবন্দরের কাছের রাস্তা (পলাশপল্লী রোড) প্রশস্ত করতে চায় ভিআই পি গাড়ি যাতায়াতের সুবিধার জন্য। রাষ্ট্রপতিভবনে আয়োজিত রাজ্যপাল সম্মেলনের সূচনা পর্বে আজ ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। শ্রী মোদীতাঁর ভাষণে বলেন যে সমাজে পরিবর্তন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে রাজ্যপালরা এক অনুঘটকেরভূমিকা পালন করতে পারেন কারণ, সংবিধানের মর্যাদা ও পবিত্রতাকে রক্ষা করার কাজেতাঁরা সঙ্কল্পবদ্ধ। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে এক ‘নতুন ভারত’ গড়ে তোলার লক্ষ্যমাত্রাপ্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কাজটি যদি এক জন-আন্দোলন রূপেগড়ে তোলা যায় তাহলে নতুন ভারতের অভ্যুদয় অবশ্যম্ভাবী। ‘নতুন ভারত’গঠনের লক্ষ্যে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে বিশদভাবে আলোচনা করার তিনি পরামর্শদেন বিভিন্ন রাজ্যের রাজ্যপালদের। তাঁর মতে, প্রত্যেকটি রাজ্যেরতরুণ ও যুবকদের উচিৎ এক একটি বিশেষ খেলাধূলার ক্ষেত্রে নিজেদের দক্ষ করে তোলা। স্বচ্ছতা,অর্থাৎ পরিচ্ছন্নতা রক্ষার অভিযানেনেতৃত্বদানের জন্য তিনি উৎসাহিত করেনরাজ্যপালদের। শ্রী মোদীবলেন, বিভিন্ন উৎসব ও বর্ষপূর্তির অনুষ্ঠান পালন পরিবর্তনের লক্ষ্যে আমাদের শক্তিও সাহস যোগায়। সৌরজ্বালানি, প্রত্যক্ষ সুফল হস্তান্তর এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে কেরোসিন-মুক্তকরার কর্মসূচি সফল করে তুলতে বিভিন্ন কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের উপ-রাজ্যপালদেরঅনুপ্রাণিত করেন প্রধানমন্ত্রী। নয়া দিল্লি: গোয়া শীর্ষ সম্মেলনের আগে ভারতের ব্রিকস চেয়ারম্যানশিপের অধীনে আমরানিম্নলিখিত ঘটনাবলীর তথ্য গ্রহণ করেছি ব্রিকস-এর বিদেশমন্ত্রী/সংযুক্তরাষ্ট্রসংঘের সাধারণ সভার অতিরিক্ত আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিষয়ক মন্ত্রীদের বৈঠক (২০সেপ্টেম্বর ২০১৬, নিউ ইয়র্ক) ব্রিকস-এরদুর্নীতি-বিরোধী উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের বৈঠক (১৬ মার্চ ২০১৬, প্যারিসের ও.ই.সি.ডি.ঘুষ-বিরোধী সম্মেলনের অতিরিক্ত; ৮ জুন ২০১৬ লন্ডনে দ্বিতীয় জি-২০ এ.সি.ডব্লিউ.জি.বৈঠকের অতিরিক্ত) ব্রিকসকন্টিনজেন্ট রিজার্ভ এরেঞ্জমেন্ট-এর গভর্নিং কাউন্সিলের দ্বিতীয় বৈঠক (৬ অক্টোবর২০১৬, ওয়াশিংটন) ৪২.জিওস্পেটিয়াল প্রযুক্তি ও ব্যবহার নিয়ে ব্রিকস-এর কর্মীগোষ্ঠীর বৈঠক (২ মার্চে২০১৬, নয়ডা) ব্রিকসঅ্যাস্ট্রোনমি ওয়ার্কিং গ্রুপের দ্বিতীয় বৈঠক (৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬, একাটেরিনবার্গ) ব্রিকস বানিজ্য ফোরাম (১৩ অক্টোবর ২০১৬, নয়াদিল্লি) ব্রিকস-এর স্থানীয় সংস্থার সম্মেলন (লক্ষ্য:বরাদ্দকরণ) ভারতের ব্রিকস চেয়ারম্যানশিপের আমলে প্রধান উদ্যোগ হারমুতি – নাহারলাগুন রেল লাইনটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করে তিনি ইটানগরে এক বিপুল জনসমাবেশে ভাষণ দিচ্ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী নাহারলাগুন ও নয়াদিল্লির মধ্যে একটি বাতানুকূল এক্সপ্রেস ট্রেনের এবং নাহারলাগুন ও গুয়াহাটির মধ্যে একটি ইন্টারসিটি এক্সপ্রেসের যাত্রা সূচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী অরুণাচল উৎসব, ২০১৫`র উদ্বোধন করে অরুণাচলপ্রদেশের ২৯তম রাজ্যস্থাপনা দিবস উপলক্ষ্যে একটি স্মরকগ্রন্থ আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন। ইটানগরের জন্য একটি জল সরবরাহ প্রকল্পের সূচনা করে তিনি ১৩২ কিলোভোল্টের একটি বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, যোগাযোগ ব্যবস্থায় ঘাটতি উত্তর-পূর্বের উন্নয়ন না হওয়ার সব থেকে বড় কারণ এবং এই প্রকল্পগুলি যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, অরুণাচল প্রদেশ গোটা দেশকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করতে পারে। এই রাজ্যে জলবিদ্যুৎ উৎপাদন সম্ভাবনার বিকাশের জন্য আহ্বান জানিয়ে তিনি জলবিদ্যুৎ প্রকল্প গড়ে তোলার কারণে অন্যত্র সরে যাওয়া মানুষকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথাও বলেন। তিনি আরও বলেন, `মেক ইন ইন্ডিয়া` – এর একটি অভিন্ন অঙ্গ হিসাবে `মেক ইন নর্থ-ইস্টের` পরিকল্পনা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের ক্ষেত্রে যে সকল বাধা-বিপত্তি রয়েছে তা দূর করতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও কেন্দ্র সরকারের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির সঙ্গে এখন ঘনিষ্ঠ সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করছে। এই উপলক্ষ্যে, অরুণাচল প্রদেশের রাজ্যপাল লেঃ জেনারেল (অবসরপ্রাপ্ত) নির্ভয় শর্মা, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নবম টুকি, কেন্দ্রীয় রেল মন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভু, রেল প্রতিমন্ত্রী শ্রী মনোজ সিনহা ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী শ্রী কিরেন রিজিজু উপস্থিত ছিলেন। নয়াদিল্লি, ১০ মার্চ, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সেশেল্স, মরিশাস ও শ্রীলঙ্কা সফরের জন্য রওনা হলেন। যাত্রা শুরুর আগে তিনি জানান, ভারতের এই তিনটি দেশের সঙ্গেই দৃঢ়, বহুমুখী ও গুরুত্বপূর্ণ সম্পর্ক রয়েছে, আর তিনটি দেশই ভারতের বিদেশ নীতিতে গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে। এই অঞ্চলের সঙ্গে সম্পর্ক ঘনিষ্ঠ করার প্রতি ভারত বিশেষ গুরুত্ব দেয় কেননা ভারতের নিরাপত্তা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে এই অঞ্চল বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর প্রথম গন্তব্য হবে সেশেল্স। সে দেশের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক, পারস্পরিক আস্থা ও অভিন্ন মূল্যবোধের ভিত্তির ওপর সুপ্রতিষ্ঠিত। ১৯৮১-র পর এই প্রথম কোন প্রধানমন্ত্রী সেশেল্স সফরে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি সেশেল্স-এর রাষ্ট্রপ্রধান ও ভারতবন্ধু জেম্স মিশেলের সঙ্গে বৈঠকের অপেক্ষায় রয়েছেন। আগামীকাল ও ১২ তারিখ প্রধানমন্ত্রী থাকবেন মরিশাসে। মরিশাসের সঙ্গে ভারতের সুপ্রাচীন সম্পর্ক আরও ঘনিষ্ঠ করার লক্ষ্যেই ‘ছোটা ভারত’-এ তাঁর এই সফর বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। প্রধানমন্ত্রী মরিশাসের সংসদে ভাষণ দেবেন। এছাড়া, ভারতে তৈরি উপকূল প্রহরা জাহাজ ব্যারাকুডার যৌথ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রী অংশ নেবেন। মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী স্যর অনিরুদ জগন্নাথের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক হবে যেখানে দু’দেশের অংশীদারিত্বমূলক সম্পর্ক আরও গভীর করার লক্ষ্যে আলোচনা হবে। এছাড়া, সে দেশের রাজনৈতিক নেতৃত্বের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আলোচনায় বসবেন। শ্রীলঙ্কায় প্রধানমন্ত্রী মোদীর এবারের সফর ১৯৮৭-র পর ভারতীয় কোন প্রধানমন্ত্রীর ঐ দ্বীপ রাষ্ট্রে প্রথম সফর। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি মৈত্রিপালা সিরিসেনার গত মাসের ভারত সফরের পর এক মাসের মধ্যে দুই রাষ্ট্রনেতার মধ্যে আবার বৈঠক হবে। তাঁর এই সফরকে প্রধানমন্ত্রী সবদিক থেকে, অর্থাৎ রাজনৈতিক, কৌশলগত, অর্থনৈতিক, সাংস্কৃতিক এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগের দিক থেকে দু’দেশের সম্পর্ককে আরও নিবিড় করবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেছেন। এই সফর প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে নিরন্তর যোগাযোগ রাখার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর অভিপ্রায়ের অঙ্গ হিসেবেই দেখা হচ্ছে। ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতিবেশী দেশ শ্রীলঙ্কায় সফরের সুযোগ পেয়ে প্রধানমন্ত্রী আনন্দিত বলে জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পিএসএলভি-র সফল উৎক্ষেপণের জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা বা ইসরোকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই উৎক্ষেপণ ভারতের মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের তৈরি করা কালামস্যাট উপগ্রহটিকে নির্দিষ্ট কক্ষপথে স্থাপিত করেছে। উত্তরপ্রদেশ,বিহার, ওড়িশা এবং জম্মু ও কাশ্মীরের কালেক্টরদের সঙ্গে আজ এক বৈঠকে মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই চারটি রাজ্যের প্রত্যেকটিতে উন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিককাজকর্ম বন্ধ করার যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, তার অগ্রগতির বিষয়টি তিনি তাঁদেরসঙ্গে এদিন পর্যালোচনা করেন। কর্মসূচির অগ্রগতির ওপরনজর রাখার জন্য রাজ্যগুলির বিশেষ দল গঠন করা উচিৎ বলে তিনি মনে করেন। শ্রী মোদীবলেন, এই বিশেষ কর্মসূচিটিকে একটি জন-আন্দোলনের রূপ দেওয়া উচিৎ। কেরলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ঐ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, কেরলের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথা বলে ঐ রাজ্যের বিভিন্ন অংশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আলাপ-আলোচনা করেছেন তিনি। বন্যা প্রভাবিত সকলকে প্রয়োজনীয় সহায়তা প্রদানের আশ্বাসও প্রধানমন্ত্রী দিয়েছেন। আমি বিশ্বাস করি, মহাত্মা গান্ধী বর্তমান বিশ্বে যতটা প্রাসঙ্গিক, তাঁর জীবৎকালেও তিনি ঠিক ততটা প্রাসঙ্গিক ছিলেন : শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের প্রধানমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব গ্রহণের সময় থেকেই শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশে ও বিদেশে যেখানেই ভাষণ দিয়েছেন, সেখানেই মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ, নৈতিকতা ও শিক্ষাদর্শগুলিকে তুলে ধরেছেন। মহাত্মা ও তাঁর অনুগামী ৮০ জন সত্যাগ্রহীর ডান্ডি অভিযান এমন এক ঘটনা, যা ঔপনিবেশিক শাসনের ভীত নড়িয়ে দিয়েছিল। বিগত সাড়ে চার বছরে এই অভিযান ভারতে ব্যাপক এবং সর্বব্যাপী পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। এমনকি, সাধারণ মানুষের মনেও স্বচ্ছ ভারত সম্পর্কে সচেতনতা কয়েকগুণ বেড়েছে। মহাত্মা গান্ধী স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ে খাদি শিল্পকে সমগ্র ভারতবাসীর হৃদয়ের সঙ্গে জুড়ে দেওয়ার চেষ্টা করেছিলেন। স্বাধীনতা সংগ্রামের যন্ত্রণার দিনগুলিতে খাদি শিল্প মৃতপ্রায় হয়ে পড়েছিল। কিন্তু এখন প্রধানমন্ত্রী তাঁর বিভিন্ন ভাষণ ও বক্তৃতার মাধ্যমে খাদি শিল্পের পুনরুজ্জীবন ঘটিয়েছেন। এই লক্ষ্যে মহাত্মা গান্ধীর দূরদৃষ্টি ও পরিকল্পনাগুলির বাস্তবায়নে গত বছরের ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে দোসরা অক্টোবর পর্যন্ত নতুন দিল্লিতে মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক অনাময় সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। চার দিনের এই সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের মন্ত্রী ও স্বাস্থ্যবিধান ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত বিশেষজ্ঞরা যোগ দেন এবং তাঁদের অমূল্য মতামত ও অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। শুধু তাই নয়, এই ভজন সমগ্র বিশ্বে এক আবেগের সঞ্চার করেছে। শ্রী নরেন্দ্র মোদী আমেদাবাদে মহাত্মা গান্ধীর তৈরি সবরমতী আশ্রমকে ভারতীয় কূটনীতির অগ্রভাগে নিয়ে এসেছেন। শ্রী মোদীর উপস্থিতিতে চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিংপিং থেকে ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনজামিন নেতানিয়াহু এমনকি, জাপানের প্রধানমন্ত্রী সিনজো আবে সবরমতী আশ্রমে এসে মহাত্মার প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে গেছেন। রাজকোটে ২০১৮’য় আলফ্রেড হাইস্কুলে মহাত্মা গান্ধী সংগ্রহালয়ের উদ্বোধন করা হয়। মহাত্মা গান্ধী এই বিদ্যালয় থেকে ১৮৮৭-তে মেট্রিক পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়েছিলেন। শ্রী মোদী সাধারণ মানুষকে উদ্বুদ্ধ করতে মহাত্মা গান্ধীর আদর্শ ও শিক্ষাকে কাজে লাগিয়েছেন, নতুন ভরত গঠন অভিযানেও এগুলি সর্বাত্মক প্রয়োগ ঘটাচ্ছেন। মহাত্মা গান্ধীর নীতি ও মূল্যবোধগুলি প্রধানমন্ত্রী তাঁর কর্মতৎপরতার মধ্য দিয়ে বাস্তবায়িত করার চেষ্টা করেছেন। ২০১৮’র দোসরা অক্টোবর নিজের ব্লগে শ্রী নরেন্দ্র মোদী বাপুর পরম্পরাগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তাঁর পরিকল্পনার কথাগুলি উল্লেখ করেছিলেন। তিনি লিখেছিলেন, ভারত বিবিধতার এক দেশ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার নতুন দিল্লিতে তথ্য ও কম্পিউটার প্রযুক্তি ভিত্তিক ‘প্রগতি’ মঞ্চে সক্রিয় প্রশাসন ও সময়ানুগ কর্মসূচি রূপায়ন বিষয়ক ২৫-তম মত বিনিময় সভায় পৌরহিত্য করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে গণ-অভিযোগ ব্যবস্হার সমাধানের বিষয়টিও বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়। ‘প্রগতি’ মঞ্চে ২৫-তম বৈঠক পূর্ণ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, ‘প্রগতি’ মঞ্চে বিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনার দরুন কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো ব্যবস্হার ক্ষেত্রে ‘প্রগতি’ মঞ্চ এক ইতিবাচক ও জোরালো মাধ্যম। তিনি আরও বলেন, বড় মাপের প্রকল্পগুলির পাশাপাশি একাধিক সামাজিক ক্ষেত্রের প্রকল্পের পর্যালোচনায় ও উন্নতিতেও এই মঞ্চ সাহায্য করেছে। বুধবার ‘প্রগতি’ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী প্রাক্তন সেনাকর্মীদের কল্যাণের সঙ্গে জড়িত অভিযোগগুলির সুষ্টু সমাধান ও এক্ষেত্রে অগ্রগতির নানা দিক খতিয়ে দেখেন। দ্রুত অভিযোগ নিষ্পত্তির প্রয়োজনীতার গুরুত্ব দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরফলে প্রাক্তন সেনাকর্মীদের সমস্যাগুলি স্বল্প সময়ের মধ্যেই সমাধান করা যেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে রেল, সড়ক, পেট্রোলিয়াম, বিদ্যুৎ, কয়লা, নগরোন্নয়ন এবং স্বাস্হ্য ও পরিবার কল্যাণ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ১০টি পরিকাঠামো প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন। এই প্রকল্পগুলি পশ্চিমবঙ্গ সহ হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, ওড়িশা, অন্ধ্রপ্রদেশ, গুজরাট, মহারাষ্ট্র, আসাম, সিকিম, বিহার, তামিলনাড়ু ও ঝাড়খন্ডে রূপায়িত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা রূপায়নের অগ্রগতিও শ্রী মোদী খতিয়ে দেখেন। ১৫ – ২০টি সুপার স্পেশালিটি ডিপার্টমেন্ট স্থাপনের প্রস্তাবও রয়েছে। এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলিতে রোগী-শয্যা সংখ্যা হবে প্রায় ৭৫০। বিপদের মূহুর্তে প্রত্যুৎপন্নমতি, দ্রুত চিন্তাভাবনার ক্ষমতা, নিঃস্বার্থ সংকল্প এবং প্রতিবেশী মানুষের জন্য সংবেদনশীলতা হল সাহসিকতার বিভিন্ন উজ্জ্বল দিক। ২৫টি ছেলেমেয়েকে জাতীয় সাহসিকতা পুরস্কার প্রদানের সময়ে এই মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘Life progression of ICCW National Bravery Awardees’ নামে যে বইটি তিনি আজ প্রকাশ করেছেন, তাতে উল্লেখ রয়েছে এই সমস্ত বিষয়ের। এই আবাসন নির্মাণ প্রকল্প রূপায়ণের জন্য নোডাল এজেন্সি হিসেবে চন্ডীগড় আবাসন পর্ষদকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। গত১৯ সেপ্টেম্বর বিহারের মধুবনি জেলার বেন্নিপত্তির কাছে এবং পরের দিন অর্থাৎ, ২০সেপ্টেম্বর পাঞ্জাবের অমৃতসর জেলার আটারি-তে মুহাওয়া গ্রামে বাস দুর্ঘটনার সংবাদেমর্মাহত প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আজতাঁর বাসভবনে ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা’র ১০০ জনেরও বেশি সুফল গ্রহীতার সঙ্গেএক আলাপচারিতায় মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘মুদ্রা’ ঋণ সহায়তারসাহায্যে কিভাবে তাঁদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, তা এদিন সুফল গ্রহীতারা ব্যাখ্যাকরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। ঝাড়খণ্ডেরবোকারো থেকে আগত এক সুফলভোগী শ্রীমতী কিরণ কুমারী জানান, ২ লক্ষ টাকার ঋণ সহায়তাগ্রহণ করে তিনি খেলনা এবং উপহার সামগ্রীর একটি দোকান চালু করেন। এর আগে তিনি এবংতাঁর স্বামী বাচ্চাদের খেলনা ফেরি করে জীবিকা নির্বাহ করতেন। কিন্তু ‘মুদ্রা’ ঋণেরসাহায্যে তিনি এখন একজন সফল ব্যবসায়ী হয়ে উঠতে পেরেছেন। কেরলেরকান্নুরের অধিবাসী শ্রী সিজেশ পি বিদেশে কাজ করেছেন আট বছরের মতো। দেশে ফিরে তিনিএকটি মেডিকেল ইউনিটের সেল্‌স ম্যানেজারের কাজ গ্রহণ করেন। কিন্তু পরে ৮ লক্ষ ৫৫হাজার টাকার ‘মুদ্রা’ ঋণের সাহায্যে ভেষজ দাঁতের মাজন তৈরির লক্ষ্যে একটি কারখানাস্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীকে তিনি তাঁর উৎপাদনের কিছু নমুনাও উপহার দেন। মাত্র ১ লক্ষ টাকারঋণ সহায়তার সুযোগ গ্রহণ করে তিনি এখন তাঁর এলাকায় পশমিনা শাল তৈরি করছেন। প্রধানমন্ত্রীরসঙ্গে আলাপচারিতাকালে তাঁকে নিজের তৈরি একটি শালও তিনি উপহার দেন। প্রাক্তনসমরকর্মী শ্রী রাজেন্দ্র সিং এসেছিলেন দেরাদুন থেকে। কিন্তু শুধুমাত্র ব্যবসা শুরু করাই নয়, আরও বেশ কিছু লোকেরকর্মসংস্থানের সুযোগও তিনি সৃষ্টি করেছেন তাঁর এই উদ্যোগের মাধ্যমে। তিনি একসময় বেকার ছিলেন। কিন্তু ৫ লক্ষ টাকার ‘মুদ্রা’ঋণের সাহায্যে তিনি ইস্পাতের জিনিসপত্র তৈরির ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর এই উত্তরণেরকাহিনী তিনি আজ বিবৃত করেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। তাই, ৫ লক্ষ টাকার ‘মুদ্রা’ ঋণের সাহায্যগ্রহণ করে তিনি কীটনাশক ও সার বিপণনের একটি ব্যবসা শুরু করেন। তাঁর এই প্রচেষ্টায়কর্মসংস্থানের সুযোগ পেয়েছেন আরও বেশ কয়েকজন। এই কর্মসূচির অন্যতমলক্ষ্য হল সাধারণ মানুষের মধ্যে আত্মবিশ্বাস প্রতিষ্ঠা। এতদিন পর্যন্ত মানুষের ধারণাছিল যে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাওয়া সম্ভব শুধুমাত্র সরকারি এবং বেসরকারিক্ষেত্রগুলিতে। কিন্তু এর বাইরেও শুধুমাত্র ব্যক্তিগত প্রচেষ্টায় যে আয় ও উপার্জনবৃদ্ধি এবং স্বনির্ভরতার সুযোগ লাভ সম্ভব, ‘মুদ্রা’ ঋণ কর্মসূচি তা প্রমাণ করেছে। বুদ্ধপূর্ণিমার পুণ্য মুহূর্তে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন : ‘ প্রত্যেককে জানাই বুদ্ধপূর্ণিমার অভিনন্দন। আজকের এই বিশেষ দিনটিতে আমরা স্মরণকরি গৌতম বুদ্ধের অনুসরণযোগ্য আদর্শকে। তাঁর মহান চিন্তাভাবনা পরবর্তীপ্রজন্মগুলিকে পথপ্রদর্শন করবে। আজ থেকে চতুর্দশ আসিয়ান-ভারত শীর্ষ বৈঠক এবং একাদশ পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হচ্ছে লাওস-এর রাজধানী শহর ভিয়েনটান-এ। এই শীর্ষ বৈঠক দুটিতে অংশগ্রহণ করছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এইসফর সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টে লিখেছেন : এই নিয়ে তৃতীয়বার এই বৈঠকগুলিতে অংশগ্রহণ করছি আমি। আমাদের নিরাপত্তা সংক্রান্তস্বার্থ রক্ষায় ও তার বিকাশে এবং এই অঞ্চলের পুরনো ও নতুন নিরাপত্তা সংক্রান্তচ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় আসিয়ানের সঙ্গে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কওবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জ এবং সেইসঙ্গেবিভিন্ন সুযোগ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে আলোচনা ও মতবিনিময়ের একটি বিশেষ মঞ্চ হল পূর্বএশিয়া শীর্ষ বৈঠক। দক্ষিণ-পূর্বএশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক প্রকৃত অর্থেই ঐতিহাসিক। আমাদেরদৃষ্টিভঙ্গি ও কর্মপ্রচেষ্টাকে একটিমাত্র শব্দে খুব ভালোভাবেই ব্যাখ্যা করা যায়।তা হল, ‘পরস্পরের সঙ্গে সংযোগ ও যোগাযোগ’ । শুরুতেই আমিআন্তরিকভাবে আরও একবার ধন্যবাদ জানাই প্রেসিডেন্ট জি-কে তাঁর উষ্ণ অভ্যর্থনা এবংএই শীর্ষ সম্মেলনের চমৎকার উদ্যোগ আয়োজনের জন্য। সম্মেলনের নিয়ন্ত্রিত পর্বেআমাদের মধ্যে যে আলোচনা ও কথাবার্তা হয়েছে তা ছিল যথেষ্ট মাত্রায় গঠনাত্মক। এইআলোচনা আমাদের পারস্পরিক সমঝোতা ও প্রেক্ষিতকে আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে। একইসঙ্গে, কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলি আপৎকালীন অর্থ মজুতের ব্যবস্থাকেপুরোপুরিভাবে সচল করে তুলেছে। এ সমস্ত কিছুই হল অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমাদের দিকচিহ্নবিশেষ যাকে অনুসরণ করে আমরা ভবিষ্যতের লক্ষ্যে আরও এগিয়ে যেতে পারি। ভবিষ্যতেরলক্ষ্যে আমাদের এই যাত্রাপথের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে নিয়ে আসা প্রয়োজন দেশেরজনসাধারণকে। আমি খুবই আনন্দিত যে চিন গত বছর থেকে সদস্য রাষ্ট্রগুলির জনসাধারণেরমধ্যে বিনিময় সফরসূচির কাজকে অনেকটাই এগিয়ে নিয়ে গেছে। আর এইভাবেই পারস্পরিক মিলনও সমন্বয় প্রচেষ্টা একদিকে যেমন আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক গভীরতা দান করবে,অন্যদিকে তেমনই আমাদের পারস্পরিক সমঝোতার মূলও আরও গভীরে পৌঁছে যাবে। রূপান্তরেরলক্ষ্যে ভারতের সুদূরপ্রসারী উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা দেশবাসীর কাছে এক বিশেষ গর্বেরবিষয়। দারিদ্র্য নির্মূল করা, স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রসার, দক্ষতাবৃদ্ধি, খাদ্য নিরাপত্তা, লিঙ্গ ক্ষেত্রে বৈষম্যহীনতা, জ্বালানি-শক্তির বিকাশ,শিক্ষার প্রসার এবং উদ্ভাবন প্রচেষ্টা– সবক’টি ক্ষেত্রেইএকটি সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যকেআমরা অনুসরণ করে চলেছি। সংশ্লিষ্ট দেশগুলির জাতীয় অভিজ্ঞতার নিরিখে ব্রিক্‌স সদস্য রাষ্ট্রগুলিনিজেদের মধ্যে এক গভীর সহযোগিতার বাতাবরণ গড়ে তুলতে পারে যাতে আখেরে লাভবান হবেসবক’টি দেশই। পারস্পরিক সহযোগিতার বিকাশে কতকগুলি বিষয় সম্পর্কে আমি ইতিমধ্যেইচিন্তাভাবনা করেছি। প্রথমতঃ, একটি ব্রিক্‌স রেটিং এজেন্সি গড়ে তোলার জন্য মিলিতপ্রচেষ্টার ওপর আমরা জোর দিয়েছি আমাদের গত বছরের আলোচ্যসূচিতেই। দ্বিতীয়তঃ, আমাদের কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্কগুলিকেতাদের ক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়িয়ে তোলার পাশাপাশি, আপৎকালীন অর্থ মজুত ব্যবস্থা এবংআন্তর্জাতিক অর্থ তহবিলের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রসারে চেষ্টা চালিয়ে যেতেহবে। তৃতীয়তঃ, আমাদের এই দেশগুলির বিকাশের পক্ষে সুলভ, নির্ভরযোগ্য এবং পর্যাপ্তজ্বালানির যোগান ও ব্যবহার একান্তভাবে জরুরি। জলবায়ুকে অনুকূল করে তোলার কাজে সুলভসহায়সম্পদকে আমাদের যথাযথভাবে ব্যবহার করতে হবে। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিরব্যবহার বিভিন্ন ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টিকে চিহ্নিত করে ফ্রান্সেরসঙ্গে ভারত মিলিতভাবে আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা (আইএসএ)-এর মতো একটি আন্তর্জাতিকউদ্যোগের সূচনা করেছে ২০১৫-র নভেম্বরে। সৌরশক্তির অধিকতর সদ্ব্যবহারের মাধ্যমেঅর্জিত সুফল পরস্পরের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার লক্ষ্যে ১২১টি দেশ মিলিতভাবেসমন্বয়সাধনের চেষ্টা চালিয়ে যাবে। সৌরশক্তি উৎপাদনের কর্মসূচিকে আরও জোরদার করেতুলতে ব্রিক্‌স সদস্য রাষ্ট্রগুলি নিবিড়ভাবে কাজ করে যেতে পারে আন্তর্জাতিক সৌরসমঝোতা অর্থাৎ, আইএসএ-এর সঙ্গে। আমাদের এই পাঁচটি দেশের যথেষ্ট শক্তি ও দক্ষতারয়েছে পুনর্নবীকরণযোগ্য তথা সৌরশক্তির উন্নততর ব্যবহার নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে। এইধরনের সহযোগিতাকে সাহায্য করার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার সঙ্গে এক সফলসংযোগ সম্ভব করতে এগিয়ে আসতে পারে এনডিবি-ও। এই প্রতিষ্ঠানটির কাছ থেকে বিশুদ্ধজ্বালানি ক্ষেত্রে আরও বেশি করে অর্থ সহায়তার প্রত্যাশা করি আমরা। চতুর্থতঃ,আমাদের এইক’টি দেশের মধ্যে রয়েছে যুবশক্তির প্রাচুর্য। আমাদের যৌথ উদ্যোগগুলিরক্ষেত্রে এই যুব সমাজকে সম্ভাব্য সকলরকমভাবে আমরা কাজে লাগাতে পারি। দক্ষতা বিকাশএবং শ্রেষ্ঠ পন্থা-পদ্ধতি বিনিময় কর্মসূচির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি একটিমূল্যবান হাতিয়ার হয়ে উঠতে পারে। পঞ্চমতঃ, গত বছর অনুষ্ঠিত গোয়া শীর্ষ সম্মেলনেস্মার্ট নগরী, নগরায়ণ এবং বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে আমাদের শহরগুলির মধ্যে সহযোগিতাপ্রসারের লক্ষ্যে চিন্তাভাবনার প্রসার ও বিনিময় আমরা ঘটিয়েছিলাম। এই কাজে এখনআমাদের আরও গতি সঞ্চার করা প্রয়োজন। ষষ্ঠতঃ, পরবর্তী প্রজন্মের উপযোগী বিকাশ ওরূপান্তর প্রচেষ্টায় প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিশ্বের নির্ভরযোগ্য একটি ক্ষেত্র হয়েউঠতে পারে। কারণ, ভারত তার নিজের অভিজ্ঞতায় ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করেছে যে প্রযুক্তি ওডিজিটাল সম্পদ দারিদ্র্য ও দুর্নীতি দূর করার ক্ষেত্রে দুটি শক্তিশালী হাতিয়ারবিশেষ। উদ্ভাবন ও ডিজিটাল অর্থনীতির ক্ষেত্রে এক বলিষ্ঠ ব্রিক্‌স অংশীদারিত্বগড়েতুললে একদিকে যেমন বিকাশের পথকে তা আরও প্রশস্ত করে তুলবে, অন্যদিকে তেমনইস্বচ্ছতা নিশ্চিত করার মাধ্যমে নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছে যেতেও তা আমাদেরনানাভাবে সাহায্য করবে। বেসরকারি শিল্পোদ্যোগ প্রচেষ্টা সহ ব্রিক্‌স-এর মূলকাঠামোর মধ্যে একটি অন্যতম প্রধান কর্মসূচি স্থির করার কাজে চিন্তাভাবনা করার জন্যসংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আমি এক প্রস্তাব পেশ করছি। এই রূপান্তরপ্রচেষ্টার একটি চালিকাশক্তি হিসেবে ব্রিক্‌স নেতৃবৃন্দের ভূমিকা খুবইতাৎপর্যপূর্ণ। এই বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রগুলিতে ব্রিক্‌স-এর এই মঞ্চ থেকে যদি আমরা আমাদেরকার্যসূচি স্থির করে ফেলতে পারি, তাহলে সমগ্র বিশ্ব এই সময়কালকে এক সুবর্ণ দশক হিসেবেইচিহ্নিত করবে। আগামীদিনে যে বাজার বা বিপণন মঞ্চ গড়ে উঠতে চলেছে, তার সঙ্গে আমাদেরএই প্রচেষ্টা হয়ে উঠবে যথেষ্ট সামঞ্জস্যপূর্ণ। মন্ত্রিসভারবৈঠকে জমি হস্তান্তর সম্পর্কিত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ফলে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধাসমন্বিত একটি আধুনিক অতিথিশালা গড়ে তোলা সম্ভব হবে রাজ্য সরকারের পক্ষে। ঐঅতিথিশালা নির্মাণ ছাড়া অন্য কোন কাজের জন্য এই জমি কোনভাবেই ব্যবহার করা চলবে না। কাবুলে আক্রমণ ও হামলার ঘটনার নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। হামলার ঘটনায় নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের গভীর সমবেদনাও জানিয়েছেন তিনি। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “কাবুলে আক্রমণ ও হামলার ঘটনার নিন্দার সঙ্গে সঙ্গে শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলিকে জানাই আমার গভীর সমবেদনার কথা। প্রেসিডেন্টমিঃ আলমাজবেগ আতামবায়েভ-এর প্রথম রাষ্ট্রীয় ভারত সফরে তাঁকে স্বাগত জানানোর সুযোগপেয়ে আমি আনন্দিত। মাননীয় প্রেসিডেন্ট, গত বছর জুলাই মাসে কিরঘিজস্তানসাধারণতন্ত্রে আমার সফরকালে যে আন্তরিক উষ্ণতা ও আতিথেয়তা আমি আপনার কাছ থেকে লাভকরেছি, তার স্মৃতি এখনও আমার হৃদয়ে অমলিন হয়ে রয়েছে। এই সময়ে আপনার এই সফর আমাদেরসহযোগিতার সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে এবং উচ্চ পর্যায়ে পারস্পরিক যোগাযোগকেআরও জোরদার করে তুলতে সাহায্য করবে বলে আমি মনে করি। ভারত ও কিরঘিজস্তানসাধারণতন্ত্র এই দুটি দেশের মধ্যে রয়েছে শতাব্দী-প্রাচীন ঐতিহাসিক ও ঐতিহ্যগতশুভেচ্ছার সম্পর্ক। আমাদের দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে এমন এক উষ্ণ আন্তরিকতাযা, কিরঘিজস্তান সাধারণতন্ত্র সহ মধ্য এশিয়ার দেশগুলির সঙ্গে আমাদের যোগাযোগপ্রসারের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটকের কাজ করেছে। আমাদের এই দুটি দেশ একসাধারণ গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য ও মূল্যবোধে বিশ্বাসী। কিরঘিজস্তান সাধারণতন্ত্রেগণতন্ত্রের এক দৃঢ়মূল ভিত্তি স্থাপনের কৃতিত্ব প্রেসিডেন্ট আতমবায়েভেই। আমাদেরদ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সবকটি বিষয় সম্পর্কেই প্রেসিডেন্ট আতমবায়েভ এবং আমিবিস্তারিত আলোচনা করেছি। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে বহুধাপ্রসারিত ও গভীরতর করে তোলারবিষয়টিকে আমরা উভয়েই বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছি। সন্ত্রাস, উগ্রবাদ এবং চরমপন্থারসাধারণ চ্যালেঞ্জগুলি থেকে কিভাবে যৌথ প্রচেষ্টায় আমাদের দু’দেশের যুবশক্তি ও সমাজব্যবস্থাকে মুক্ত রাখা যায়, সে সম্পর্কেও আলোচনা করেছি আমরা। এই চ্যালেঞ্জগুলিরমোকাবিলায় এবং সেগুলিকে পরাভূত করার সাধারণ স্বার্থে নিবিড় সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে কাজকরে যাওয়ার প্রশ্নেও আমরা সম্মতি প্রকাশ করেছি। মধ্য এশিয়াকে নিরন্তর শান্তি,স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির এক বিশেষ অঞ্চল রূপে গড়ে তোলার কাজে কিরঘিজস্তানসাধারণতন্ত্রকে আমাদের এক মূল্যবান অংশীদার বলেই আমরা মনে করি। এক্ষেত্রে একযোগেকাজ করে যাওয়ার ক্ষেত্রে সাংহাই সহযোগিতা সংগঠন যে একটি মূল্যবান মঞ্চ হয়ে উঠতেপারে, সে বিষয়েও আমরা আশাবাদী। প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা প্রচেষ্টার বিষয়গুলি আমি পর্যালোচনা করেছি প্রেসিডেন্টআতমবায়েভ-এর সঙ্গে। কিরঘিজ-ইন্ডিয়া মাউন্টেন বায়ো-মেডিক্যাল রিসার্চ সেন্টারটিআমাদের যৌথ উদ্যোগের এক সফল দৃষ্টান্ত। একটি লাভজনক গবেষণা প্রচেষ্টা হিসাবে তাইতিমধ্যেই স্বীকৃতি লাভ করেছে। কিরঘিজ সাধারণতন্ত্রে কিরঘিজ-ভারত যৌথ সেনাপ্রশিক্ষণ কেন্দ্রের কাজও আমরা শুরু করে দিয়েছি। সন্ত্রাসের মোকাবিলায় আমাদের যৌথসেনা মহড়া বর্তমানে এক বার্ষিক অনুষ্ঠানের পর্যায়ে উন্নীত হয়েছে। এ বিষয়ে পরবর্তীপদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে কিরঘিজ সাধারণতন্ত্রে আগামী বছরের গোড়ার দিকে। আমাদেরদু’দেশের অর্থনীতির মধ্যে সংযোগকে আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নেও প্রেসিডেন্টআতমবায়েভের সঙ্গে আমি সহমত হয়েছি। এই উদ্দেশ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও অর্থনৈতিকসম্পর্ককে আরও জোরদার করে তুলতে এবং দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে বিনিময় কর্মসূচিরপ্রসারে একযোগে কাজ করে যাব আমরা। আজএখানে আমাদের দু’দেশের মধ্যে যে সমস্ত বিষয়ে সমঝোতা চূড়ান্ত, তা এই লক্ষ্যে আমাদেরচালিত করতে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। মধ্য এশিয়া অঞ্চলের মধ্যে প্রথম কিরঘিজসাধারণতন্ত্রের সঙ্গেই আমরা গত বছর টেলি-মেডিসিন ক্ষেত্রে এক যোগাযোগ কর্মসূচিরসূচনা করেছি। এই প্রকল্পকে কিরঘিজ সাধারণতন্ত্রের অন্যান্য অঞ্চলগুলিকেওসম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব। ২০১৭’র মার্চেভারত ও কিরঘিজস্তান সাধারণতন্ত্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ২৫তম বার্ষিকীউদযাপিত হতে চলেছে। এই স্মরণীয় ঘটনাটির জন্য যখন আমরা অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি,তখন প্রেসিডেন্ট আতমবায়েভের এই ভারত সফর আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে আরও গভীরেনিয়ে যাওয়ার প্রচেষ্টা ও প্রক্রিয়াকে আরও গতিশীল করে তুলবে। শুধু তাই নয়,সাম্প্রতিককালে আমাদের এই সহযোগিতার পথ ধরে যে সমস্ত সুফল আমরা লাভ করেছি, তাকেআরও সুসংবদ্ধ করে আগামী মাস ও বছরগুলিতে আমাদের সম্পর্ককে আরও নিবিড় করে তুলতেসাহায্য করবে। এই বাজেটে দেশের কৃষি থেকে শুরু করে পরিকাঠামো নির্মাণ পর্যন্ত লক্ষ্য রাখাহয়েছে। এই বাজেটকৃষক-বান্ধব, সাধারণ মানুষের অনুকূল, বাণিজ্য পরিবেশ-বান্ধব, আর পাশাপাশিউন্নয়ন-বান্ধবও। এতে ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’-এর পাশাপাশি ‘ইজ অফ লিভিং’কে গুরুত্বদেওয়া হয়েছে। মধ্যবিত্ত যাতে অধিক সঞ্চয় করতে পারেন, একবিংশ শতাব্দীর ভারতের জন্যনবীন প্রজন্মের পরিকাঠামো আর উন্নত স্বাস্থ্য সুনিশ্চিত করা – এসব কিছুই জীবনধারণকে সহজ করার লক্ষ্যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আমাদের দেশের কৃষকরা খাদ্যশস্য আর ফল-সব্জির রেকর্ড উৎপাদন করে দেশেরউন্নয়নে রেকর্ড অবদান রেখেছেন। কৃষকের আয় বৃদ্ধির লক্ষ্যে এই বাজেটে বেশ কিছুপদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। গ্রাম এবং কৃষির ক্ষেত্রে প্রায় সাড়ে ১৪ লক্ষকোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ৫১ লক্ষ নতুন বাড়ি, ৩ লক্ষ কিলোমিটারের বেশি সড়কপথ,প্রায় ২ কোটি শৌচালয়, ১ কোটি ৭৫ লক্ষ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ – এসবের মাধ্যমে দলিত,পীড়িত, শোষিত ও বঞ্চিত মানুষের প্রত্যক্ষ লাভ হবে। এ এমন সব পদক্ষেপ, যা বিশেষ করেগ্রামীণ ক্ষেত্রে নিজেদের সঙ্গে নতুন রোজগারের সুযোগ তৈরি করবে। কৃষকদের বিনিয়োগেরদেড় গুণ মূল্য পাইয়ে দেওয়ার ঘোষণাকে আমি প্রশংসা করি। কৃষকরা যাতে এই সিদ্ধান্তথেকে সম্পূর্ণ লাভবান হন, তা সুনিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যগুলির সঙ্গেআলোচনার মাধ্যমে একটি পাকা ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। সবজি এবং ফল উৎপাদনকারী কৃষকদেরজন্য ‘অপারেশন গ্রিনস্‌’ একটি কার্যকরি পদক্ষেপ রূপে প্রমাণিত হবে। আমাদের দেশে সমবায় সমিতিগুলিআয়করে ছাড় পায়। কিন্তু কৃষক-উৎপাদক সংস্থা বা এফপিও-গুলি একই রকম কাজ করলেও আয়করেছাড় পায় না। আমাদের কৃষকরা মৎস্যচাষ, পশুপালন, হাঁস-মুরগী পালন ওমৌপালনের সঙ্গে যুক্ত। এই অতিরিক্ত কাজের জন্য তাঁদের ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেতে সমস্যাহয়। সেজন্য কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে এখন থেকে এসব চাষের ক্ষেত্রে ঋণদানেরব্যবস্থা চালু করা একটি কার্যকরি পদক্ষেপ। ভারতের ৭০০-রও বেশি জেলায় প্রায় ৭ হাজারব্লক রয়েছে। এই ব্লকগুলির মাধ্যমে প্রায় ২২ হাজার গ্রামীণ বাণিজ্য কেন্দ্রেরপরিকাঠামো উন্নয়ন, আধুনিকীকরণ, নবনির্মাণ এবং গ্রামের সঙ্গে সেগুলির যোগাযোগব্যবস্থা উন্নয়নের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনার মাধ্যমে এখন গ্রামের হাটগুলিরসঙ্গে উচ্চ শিক্ষা কেন্দ্র এবং হাসপাতালগুলির মধ্যে যাতায়াত ব্যবস্থা স্থাপন করাহবে। ফলে, গ্রামের মানুষের জীবন আরও সহজ হবে। আমরা উজ্জ্বলা যোজনাতেও ‘ইজ অফ লিভিং’-এর ভাবনার ছাপ লক্ষ্য করেছি। এইপ্রকল্প দেশের দরিদ্র মহিলাদের শুধু নৈমিত্তিক রান্নার ধোঁয়া থেকে মুক্ত করছে না,তাঁদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমও হয়ে উঠেছে। আমি খুশি যে, এই প্রকল্প বিস্তারের মাধ্যমেএখন এর লক্ষ্য ৫ কোটি পরিবার থেকে বাড়িয়ে ৮ কোটি পরিবার করে দেওয়া হয়েছে। দেশেরঅধিকাংশ দলিত, আদিবাসী এবং পিছিয়ে পড়া মানুষেরা এর দ্বারা লাভবান হচ্ছেন। তপশিলিজাতি এবং জনজাতির উন্নয়নে এই বাজেটে প্রায় ১ লক্ষ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। নিম্ন মধ্যবিত্ত এবং দরিদ্র মানুষের জীবনে নানা রোগের চিকিৎসা সর্বদাইদুশ্চিন্তার বিষয় হয়ে থাকে। এবারের বাজেটে তাঁদের চিন্তামুক্ত করার জন্য ‘আয়ুষ্মানভারত’ নামক নতুন প্রকল্পের প্রস্তাব রয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের ১০ কোটি দরিদ্র ওনিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবার উপকৃত হবেন। অর্থাৎ, প্রায় ৪৫ থেকে ৫০ কোটি মানুষ এর আওতায়আসবেন। এই পরিবারগুলির সদস্যরা চিহ্নিত হাসপাতালগুলিতে বছরে ৫ লক্ষ টাকার চিকিৎসাকরাতে পারবেন। এটি এখন পর্যন্ত বিশ্বে সরকারি খরচে সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্যসুনিশ্চিতকরণ প্রকল্প। দেশের সকল বৃহৎ পঞ্চায়েতগুলিতে প্রায় দেড় লক্ষ লক্ষ ‘হেলথ ওয়েলনেসসেন্টার’ স্থাপনের এই পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। এরফলে, গ্রামীণ মানুষেরস্বাস্থ্য পরিষেবা সুলভ হবে। সারা দেশে ২৪টি নতুন মেডিকেল কলেজ স্থাপনের মাধ্যমেচিকিৎসা পরিষেবা যেমন উন্নত হবে, তেমনই আরও বেশি সংখ্যক মেধাবী ছাত্রছাত্রীডাক্তারি পড়তে পারবেন। আমরা চেষ্টা করছি যাতে, দেশের প্রত্যেক তিনটি সংসদীয়ক্ষেত্রে ন্যূনতম একটি মেডিকেল কলেজ থাকে। এই বাজেটে বরিষ্ঠ নাগরিকদের অনেক চিন্তাকে মাথায় রেখে বেশ কিছু সিদ্ধান্তনেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বয়ঃবন্দনা যোজনার মাধ্যমে এখন বরিষ্ঠ নাগরিকেরা ১৫লক্ষ টাকা পর্যন্ত সঞ্চয়ে ন্যূনতম ৮ শতাংশ সুদ পাবেন। ব্যাঙ্ক ও ডাকঘরে জমা করাতাঁদের ৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত প্রাপ্ত সুদে কোনও কর লাগবে না। স্বাস্থ্য বিমার ৫০হাজার টাকা পর্যন্ত কিস্তিতে আয়কর ছাড় দেওয়া হবে। তেমনি কঠিন রোগের চিকিৎসাক্ষেত্রে ১ লক্ষ টাকা পর্যন্ত খরচের ক্ষেত্রে আয়কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। দীর্ঘকাল ধরেই আমাদের দেশে অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প অর্থাৎ এমএসএমই-দেরঅধিক দরে কর দিতে হয়। এই বাজেটে সরকার সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারিশিল্পে আয়কর ৫ শতাংশ হ্রাস করেছে। এখন তাদেরকে ৩০ শতাংশ এর স্থানে ২৫ শতাংশ করদিতে হবে। অণু, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপতিরা যাতে সহজে প্রয়োজনীয় পুঁজি পেতেপারেন, সেকথা মাথায় রেখে ব্যাঙ্ক এবং এনবিএফসি’র মাধ্যমে ঋণের ব্যবস্থা সহজ করাহয়েছে। এভাবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া মিশন’ও শক্তিশালী হবে। কর্মসংস্থানকে উৎসাহ যোগাতে আর কর্মচারীদের সামাজিক সুরক্ষা সুনিশ্চিত করতেসরকার একটি দূরদৃষ্টিসম্পন্ন ইতিবাচক সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এর ফলে, ‘ইনফর্মাল’ থেকে‘ফর্মাল’-এর দিকে এগোনোর সুযোগ তৈরি হবে আর কর্মসংস্থানের নতুন নতুন পথ খুলবে। এখনসরকার নতুন শ্রমিকের ইপিএফ-এ তিন বছর পর্যন্ত ১২ শতাংশ অর্থ জমা করবে। তা ছাড়া,মহিলাদের রোজগারের সুযোগ বাড়াতে, তাঁদের হাতে পাওয়া বেতন বৃদ্ধি করতে ইপিএফ-এ জমারাশি ১২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৮ শতাংশ করা হয়েছে। যদিও এক্ষেত্রে মালিক পক্ষকে ১২শতাংশ জমা করে যেতে হবে। কর্মরত মহিলাদের ক্ষমতায়নের ক্ষেত্রে এটি অত্যন্তগুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। আধুনিক ভারতের স্বপ্ন সাকার করতে, সাধারণ মানুষের ‘ইজ অফ লিভিং’ বৃদ্ধিকরতে আর উন্নয়নকে স্বায়িত্ব প্রদান করতে ভারতে ‘পরবর্তী প্রজন্ম পরিকাঠামো’ গড়েতোলা অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। এই বাজেটে রেল-মেট্রো, হাইওয়ে-আইওয়ে, বন্দর-বিমানবন্দর,পাওয়ার গ্রিড-গ্যাস গ্রিড, সাগরমালা-ভারতমালা, ডিজিটাল ইন্ডিয়ার সঙ্গে যুক্তপরিকাঠামো উন্নয়নের ক্ষেত্রে জোর দেওয়া হয়েছে। এইপ্রকল্পগুলির মাধ্যমে দেশে কর্মসংস্থানের অপার সম্ভাবনা গড়ে উঠবে। বেতনভোগী, মধ্যবিত্তদেরপ্রদত্ত করে ছাড় দেওয়ার জন্য আমি অর্থমন্ত্রীর প্রতি কৃতজ্ঞতা জানাই। এই বাজেটপ্রত্যেক ভারতীয় নাগরিকের আশা-আকাঙ্খা পূরণের ক্ষমতা রাখে। পারস্পরিক স্বার্থে নতুন ও পুনর্নবীকরনযোগ্য ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতায় উৎসাহদান ও তার প্রসারে লক্ষ্যে সহযোগিতামূলক প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক গড়ে তোলাই এই চুক্তির মূল উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ পারদ সংক্রান্তমিনামাতা কনভেশনের অনুমোদনের প্রস্তাব এবং অনুমোদনের ব্যবস্হা জমা দেওয়ার মাধ্যমেভারতকে এই কনভেনশনের একটি পক্ষ করে তোলার প্রস্তবে মঞ্জুরী দেওয়া হয়েছে। এইমঞ্জুরীর ফলে পারদ ভিত্তিক উৎপাদন এবং পারদের যৌগ সংশ্লিষ্ট প্রক্রিয়াগুলিতেনিরবচ্ছিন্ন ব্যবহারের সুযোগ ২০২৫ সাল পর্যন্ত পাওয়া যাবে। পারদএবং পারদের যৌগ থেকে যেসব ক্ষতিকারক নির্গমণ হয়ে থাকে তা থেকে মানবদেহ ও পরিবেশকেরক্ষা করার উদ্দেশ্য নিয়ে যে সুস্হায়ী উন্নয়নের কথা ওঠে, সেই নিরিখে পারদসংক্রান্ত্র মিনামাতা কনভেশনটি রূপায়িত হবে। এইকনভেনশ পারদের ক্ষতিকারক প্রভাব থেকে সবথেকে বিপন্নদের রক্ষা করে এবং সেইসঙ্গেইউন্নয়নশীল দেশের উন্নয়মূলক পরিসরগুলিকেও সুরক্ষা দেয়। তাই এর ফলে দরিদ্র এবংবিপন্ন জনগোষ্ঠীগুলির স্বার্থ সুরক্ষিত হবে। পারদ সংক্রান্ত্র মিনামাতা কনভেশনএছাড়াও বিভিন্ন উৎপাদন ও প্রস্তুত প্রক্রিয়ায় পারদমুক্ত বিকল্প এবং পারদ-রহিতপ্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য নানা সংস্হাকে আবেদন জানাবে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। তিনি এমনই এক ব্যক্তিত্ব, যিনি ভারতকে স্বাধীন করে দেশবাসীকে সম্মানের জীবন দিতে নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। পুলওয়ামায় আত্মোৎসর্গকারী বীর জওয়ানদের স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শোকের এই মুহূর্তে দেশ তাঁদের পাশেই রয়েছে। সন্ত্রাসবাদী হামলার ষড়যন্ত্রকারীদের কড়া বার্তা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত কখনই অন্য দেশের অভ্যন্তরীণ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করে না। তবে, ভারতের ব্যাপারে অনাবশ্যক হস্তক্ষেপকে কখনই মেনে নেওয়া হবে না। “আমি শুধু দেশের বীর সন্তানদেরই নয়, তাঁদের মায়েদেরকেও, যাঁরা এমন সন্তানের জন্ম দিয়েছিলেন, তাঁদের স্যালুট করি।” তিনি জানান, প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিচাঁই যোজনার মাধ্যমে ধুলে সহ মহারাষ্ট্র এবং দেশের অন্যান্য অংশে সেচ ব্যবস্থার উন্নতি ঘটানো সম্ভব হচ্ছে। মহারাষ্ট্রের শুষ্ক এলাকায় জল সরবরাহ করতে সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছিল, এটি তারই সুফল বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী, জলগাঁও-উধানা রেল প্রকল্পের ডবল লাইন এবং বিদ্যুতিকরণ প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। সাধারণ নাগরিক এবং পণ্য চলাচলের সুবিধার্থে গত চার বছর ধরে অত্যন্ত দ্রুততার সঙ্গে ২,৪০০ কোটি টাকার এই প্রকল্প সম্পন্ন করা হয়। উত্তর এবং দক্ষিণের মধ্যে এই রেললাইন স্থানীয় এলাকার বিকাশে সহায়ক হবে। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে পতাকা দেখিয়ে ভুসাওয়াল-বান্দ্রা খান্দেশ এক্সপ্রেস ট্রেনটির যাত্রার সূচনা করেন। এই ট্রেনটির মাধ্যমে মুম্বাই এবং ভুসাওয়ালের মধ্যে সরাসরি যোগাযোগ সম্ভব হবে। প্রধানমন্ত্রী, নান্দুরবার-উধানা এমইএমইউ ট্রেন এবং উধানা-পালাডি এমইএমইউ ট্রেন যাত্রারও সূচনা করেন। তিনি বোতাম টিপে ৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ ধুলে-নার্দানা রেললাইন এবং ১০৭ কিলোমিটার দীর্ঘ জলগাঁও-মানমাড় তৃতীয় রেললাইনের শিলান্যাস করেন। এই প্রকল্পগুলি বাস্তবায়িত হলে, সময় এবং যান চলাচল পরিচালন ব্যবস্থা আরও ভালো হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইসব প্রকল্পের ফলে ধুলে ও সংলগ্ন এলাকার যোগাযোগ এবং উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং উন্নয়নের মাপকাঠিতে শীঘ্রই ধুলে, সুরাটের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় থাকতে পারবে। নরেন্দ্র মোদী সুলওয়াড়ে জামফল কানোলি সেচ প্রকল্পেরও সূচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী, ধুলে শহরে অম্রুত প্রকল্পের আওতায় ৫০০ কোটি টাকা ব্যয়ে বিভিন্ন জল সরবরাহ প্রকল্প এবং ভূগর্ভস্থ নিকাশি প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ধুলের খরাপ্রবণ এলাকায় নিরাপদ পানীয় জল সরবরাহ করা সম্ভব হবে। শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, তাঁর সরকার দেশের প্রতিটি মানুষের জীবনযাপন সহজ এবং উন্নত করতে সবরকম প্রয়াস চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন গত ২১ মে রুশ ফেডারেশনের সোচি শহরে প্রথম অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হয়েছিলেন। দুই নেতা-ই, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বিশেষ এবং সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদ্বারিত্ব, বিশ্বশান্তি এবং স্হিতিশীলতার পক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে একমত হয়েছেন। তাঁরা, মুক্ত এবং সমতা ভিত্তিক বিশ্ব ব্যবস্হায় ভারত ও রাশিয়ার গুরুত্বপূর্ণ অবদান বিষয়টিও উল্লেখ করেন। এই প্রসঙ্গে তাঁরা বিশ্বশান্তি এবং স্হিতিশীলতা রক্ষায় অভিন্ন দায়িত্বশীল দুটি প্রধান শক্তি হিসাবে একে অপরের কাজের স্বীকৃতি দেন। উভয় নেতা-ই গুরুত্বপূর্ণ আর্ন্তজাতিক বিষয়ে গভীরভাবে আলাপ-আলোচনা করেন। তাঁরা একটি বহুপাক্ষিক বিশ্ব ব্যবস্হা গড়ে তোলার গুরুত্ব বিষয়ে একমত হন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা এবং সমন্বয় বিশেষ করে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিভিন্ন বিষয়ে এই সমন্বয়কে জোরদার করার সিদ্ধান্ত নেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট পুতিন রাষ্ট্রসঙ্ঘ, সাংহাই সহযোগিতা সংগঠন, ব্রিকস এবং জি-২০এর মতো বহুপাক্ষিক সংগঠনে একজোট হয়ে কাজ করার বিষয়েও রাজি হন। উভয় নেতা-ই সন্ত্রাসবাদ এবং সাধারণ মানুষের বিদ্রোহীকরণ বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন এবং যে কোনও ধরনের সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় তাঁদের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। উভয় নেতা-ই জাতীয় উন্নয়ন পরিকল্পনা এবং অগ্রাধিকার বিষয়ে বিস্তারিতভাবে মত বিনিময় করেন। তাঁরা ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সম্পর্কের বৈশিষ্ট্যে গভীর আস্হা, পারস্পরিক শ্রদ্ধা এবং সদিচ্ছা প্রসঙ্গে সন্তোষ ব্যক্ত করেন। ২০১৭-র জুন মাসে সেন্ট পিটার্সবার্গ-এ দু দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে যে শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, তার সদর্থক প্রভাবে সন্তোষ ব্যক্ত করে উভয় নেতাই এ বছরের শেষ দিকে ভারতে শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের আগে তার সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা প্রস্তুত করার জন্য আধিকারিকদের নির্দেশ দেন। তাঁরা শক্তিক্ষেত্রে দু দেশের মধ্যে সহযোগিতা পরিধি বৃদ্ধির বিষয়ে সন্তোষ ব্যক্ত করেন এবং এই প্রসঙ্গে রাশিয়ার ‘গ্যাজপ্রোম’ এবং ভারতের ‘গেইল’-এর মধ্যে দীর্ঘমেয়াদী চুক্তির আওতায় প্রথম দফা এলএনজি সরবরাহকে স্বাগত জানান। উভয় নেতা-ই দু দেশের মধ্যে সামরিক, নিরাপত্তা, পারমানবিক শক্তিক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদী অংশীদারিত্বের তাৎপর্যের ওপর জোর দেন এবং এইসব ক্ষেত্রে প্রচলিত সহযোগিতাকে স্বাগত জানান। উভয় নেতা-ই দু দেশের নেতৃবৃন্দের মধ্যে বার্ষিক শীর্ষ বৈঠক ছাড়াও, নেতৃত্বের স্তরে অতিরিক্ত সংযোগের জন্য এই ধরনের অনানুষ্ঠানিক শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের ধারনাটিকে স্বাগত জানান। আজ রাজ্যসভায় এ প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শ্রী মোদী বলেন যে, সাংসদহিসাবে অবসর গ্রহণের পরও তাঁরা যে সমাজ সেবার ক্ষেত্রে এক বৃহত্তর এবং শক্তিশালীভূমিকা পালন করবেন এ বিষয়ে তিনি নিশ্চিত। সাংসদ থাকাকালীন তাঁরা সকলেই যথেষ্টগুরুত্বের সঙ্গেই কাজ করেছেন এবং নিজের নিজের চিন্তাভাবনা অনুযায়ী বিশেষ অবদানেরস্বাক্ষরও রেখেছেন। জাতির উজ্জ্বলতর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে রাজ্যসভার বিদায়ী সাংসদরাযে তাঁদের সাধ্য মতো চেষ্টা করেছেন – একথারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনিবলেন, বিদায়ী সাংসদদের অবদানের কথা দেশ কখনই বিস্মৃত হবে না। শ্রী মোদী বলেন, রাজ্যসভা হ’ল সংসদের উচ্চতর কক্ষ। এখানে প্রবীণ ও অভিজ্ঞসদস্যরা এক বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকেন, যা কিনা নীতি প্রণয়নেরক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। বহু বিদায়ী সাংসদ এবং তাঁদের অবদানের কথা এদিন বিশেষভাবে তুলে ধরেনপ্রধানমন্ত্রী। একই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, তিন তালাক বিষয়টি সম্পর্কে সিদ্ধান্তগ্রহণের সময়ে বিদায়ী সদস্যরা সাংসদ হিসাবে আর ভূমিকা পালন করতে পারবেন না, এটাখুবই দুর্ভাগ্যজনক। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী মিঃ ডেভিড ক্যামেরন ১২ ও ১৩ নভেম্বর লন্ডনে আলোচনা বৈঠকে মিলিত হন। দু’দেশের ক্রমবর্ধমান শক্তি এবং সম্পর্কের গভীরতা ও প্রসারতা নিয়ে তাঁদের মধ্যে ইতিবাচক মতবিনিময় হয়। দু’দেশের মধ্যে এই সম্পর্ক পারস্পরিক নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধির লক্ষ্যে এক মূল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছে বলে তাঁরা সহমত হন। ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশ এবং একটি বিশ্বশক্তি হয়ে ওঠার ফলে দু’দেশের অর্থনৈতিক সহযোগিতা আরও নিবিড় করে তোলার ব্যাপারে দুই নেতাই বিশেষ আশাবাদী হয়ে ওঠেন। যে মৌলিক নীতিগুলির ওপর ভিত্তি করে ভারত-ব্রিটেন অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে দুই নেতা সেগুলি চিহ্নিত করে সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র অনুসন্ধানে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যান। অংশীদারিত্বের এই সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আরও ঘন ঘন প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ের শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের সপক্ষেও তাঁরা মত প্রকাশ করেন। সংশ্লিষ্ট কর্মীদের নির্দেশ দেওয়া হয় সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির ওপর কড়া নজর রাখার এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের সন্ত্রাসবাদ বিরোধী প্রচেষ্টার সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার। মালদ্বীপে এক স্থায়ী গণতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে দুই প্রধানমন্ত্রী সহমত প্রকাশ করেন। অন্যদিকে আফগানিস্তানে এক সার্বভৌম গনতান্ত্রিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ভারত ও ব্রিটেন সমস্তরকমের সহযোগিতা যুগিয়ে যাবে বলেও বৈঠকে মত প্রকাশ করা হয়। ইরানের ঐতিহাসিক পরমাণু কর্মসূচির প্রস্তাবকে ভারত ও ব্রিটেন স্বাগত জানিয়ে বলে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের উচিত এই বিষয়টির সাফল্যজনক রূপায়ণের। ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলে উদ্ভুত সমস্যার স্থায়ী সমাধানেও উদ্যোগী হওয়া উচিত বলে দুই প্রধানমন্ত্রী মত প্রকাশ করেন। ২০১৫ পরবর্তী উন্নয়ন কর্মসূচিকে ‘বিশ্বের রূপান্তর – নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যে ২০৩০ পর্যন্ত কর্মসূচি’র পথে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকে দুই প্রধানমন্ত্রীই স্বাগত জানান। তাঁরা বলেন, এই বিশেষ কর্মসূচিটির মধ্যে দারিদ্র্য নির্মূলকরণের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। সেইসঙ্গে, পরিবেশ সুরক্ষা এবং পরিবেশগত বৈচিত্র্য রক্ষার গুরুত্বের কথাও দুই প্রধানমন্ত্রীর আলোচ্যসূচিতে স্থান পায়। বন্যপ্রাণী নিয়ে বেআইনি কার্যকলাপ এবং অবৈধ বাণিজ্যিক প্রবণতা রোধ করতেও একজোট হওয়ার আহ্বান জানান তাঁরা। এক শক্তিশালী, নিরন্তর এবং সুষম বিকাশের লক্ষ্যে একত্রে কাজ করার অঙ্গীকারও গ্রহণ করা হয়। ভারত ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের শক্তিকে মেনে নিয়ে বলা হয় এই সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তুলতে দুটি দেশই একসঙ্গে এগিয়ে যাবে। আসন্ন আর্থিক ও অর্থনৈতিক আলোচনা বৈঠকে ভারতের অর্থমন্ত্রী শ্রী অরুণ জেটলি এবং ব্রিটেনের চ্যানসেলর অফ দ্য এক্সচেকার মিঃ জর্জ ওসবোর্ন এই বিষয়টিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন বলে দুই প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। বিনিয়োগ ও বাণিজ্য ক্ষেত্রেও ভারত ও ব্রিটেন একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করতে অঙ্গীকারবদ্ধ। দু’দেশের তথ্যপ্রযুক্তি এবং ডিজিটাল শিল্পক্ষেত্রে পারস্পরিক অবদানকে আরও নতুন নতুন ক্ষেত্রে প্রসারের সম্ভাবনার বিষয়েও দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়। এক্ষেত্রে পণ্য ও পরিষেবা – দু’দিক থেকেই একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার বন্ধনে আবদ্ধ থাকবে বলে বৈঠকে জানানো হয়। এই ব্যবস্থাটি রূপায়িত হলে ভারতের বেসরকারি ক্ষেত্রে মূলধন ও বিনিয়োগের ক্ষেত্র সুপ্রশস্ত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। পুনর্গঠিত ভারত-যুক্তরাজ্য সি ই ও ফোরামের প্রথম বৈঠকটিকেও স্বাগত জানিয়েছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সুযোগসুবিধা এবং চ্যালেঞ্জগুলি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীদের পরামর্শ দেবে এই ফোরাম। রেল প্রকল্পগুলির পরিচালন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যুক্তরাজ্য যে সাফল্য দেখিয়েছে তার বিশেষ প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। সরকারি অনুমোদনে লন্ডনে প্রথম রুপি বন্ড চালু করার ইচ্ছার কথা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। গাড়ি নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন নতুন উদ্ভাবনী শক্তিকে উৎসাহ দিতে আগ্রহ প্রকাশ করেন দুই নেতাই। দু’দেশের মধ্যে এ ব্যাপারে একটি মউ স্বাক্ষরিত হবে বলেও দুই নেতা ঘোষণা করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী জানান, এই ধরনের উদ্যোগে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টিতে সহমত হয়েছে দুটি দেশই। ভারতে মোট প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ৮.৫৬ শতাংশ স্থান অধিকার করে রয়েছে ব্রিটেন। ভারতীয় বিভিন্ন সংস্থা যুক্তরাজ্যে কর্মসংস্থানের সুযোগ করে দিয়েছে ১ লক্ষ ১০ হাজার মানুষকে। বিমাশিল্পে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রকে ভারতের বাজার উন্মুক্ত করে দেওয়ায় সন্তোশ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন। বিমা ও পেনশন ক্ষেত্রে এই সীমা বাড়ানো হয়েছে ৪৯ শতাংশ পর্যন্ত। এর ফলে বিমাশিল্পের ক্ষেত্রে ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে এক নতুন সহযোগিতার ক্ষেত্র আবিষ্কৃত হয়েছে। সুস্থ নদী ব্যবস্থা গড়ে তুলতে টেম্‌স ও গঙ্গার উন্নয়ন সম্পর্কিত এক নতুন কর্মসূচির কথা ঘোষণা করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। চিকিৎসা সংক্রান্ত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ, সার্বিক স্বাস্থ্য সুরক্ষা, নিরাপদ ও কার্যকর ওষুধ উদ্ভাবন ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে দু’দেশের মধ্যেই স্বাক্ষরিত হয়েছে নতুন নতুন চুক্তি। স্বাস্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বৃদ্ধির বিষয়টিতেও জোর দিয়েছেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এই ধরনের বিনিয়োগকে উৎসাহদান করতে ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের উদ্যোগে একটি টাস্ক ফোর্স গঠনের যে সিদ্ধান্ত ভারত গ্রহণ করেছে তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ক্যামেরন। চণ্ডীগড়ে কিংস কলেজ হসপিটাল গড়ে তোলার ব্যাপারে কিংস কলেজ হসপিটাল এন এইচ এস ফাইন্ডেশন ট্রাস্ট এবং ইন্দো-ইউ কে হেল্‌থকেয়ার প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে যে চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তাকেও স্বাগত জানান দুই প্রধানমন্ত্রী। দু’দেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্কের গভীরতাকে সম্মান জানাতেই এই উৎসবের আয়োজন করা হবে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। ব্রিটিশ লাইব্রেরি এবং ভারতের জাতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগে যে সমস্ত পুরাতাত্ত্বিক সংগ্রহ রয়েছে সেগুলি ডিজিটাল প্রথায় সংরক্ষণের বিষয়টিতে সহমত প্রকাশ করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। পর্যটন ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সহযোগিতা প্রসারের কর্মসূচিগুলিকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছেন দুই দেশের প্রধানমন্ত্রী। অপরাধমূলক ঘটনার মোকাবিলায় আইনি সহযোগিতার ক্ষেত্রেও পারস্পরিক উদ্যোগকে আরও জোরদার করে তোলার আহ্বান জানান তাঁরা। দু’দেশের জনসাধারণের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি, কর্মসংস্থান এবং নিরাপত্তার লক্ষ্যে ভারত-যুক্তরাজ্য অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এক অবিচ্ছেদ্য অংশ হয়ে উঠবে বলে দুই নেতাই আশা ব্যক্ত করেন। ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’ সম্মেলনে যোগ দিতে চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী শ্রী আন্দ্রেজ বাবিজ ১৭ থেকে ১৯শে জানুয়ারি সরকারি সফরে ভারতে রয়েছেন। তাঁর সঙ্গে রয়েছেন সে দেশের শিল্প ও বাণিজ্য দপ্তরের মন্ত্রী শ্রীমতী মার্তা নোভাকোভা এবং এক বৃহৎ বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদল। অংশীদার দেশ চেক প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী বাবিজ সে দেশের বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন। সম্মেলনের ফাঁকে ১৮ই জানুয়ারি প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রধানমন্ত্রী বাবিজ এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হন। আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয় ছাড়াও দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে তাঁরা আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদীর দূরদর্শী নেতৃত্বের প্রশংসা করে চেক প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় অর্থনীতির দ্রুত বিকাশ এবং দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রভূত সম্ভাবনার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বাবিজ গত সেপ্টেম্বরে ভারতের রাষ্ট্রপতির চেক প্রজাতন্ত্র সফরকালে দু’দেশের মধ্যে হওয়া একাধিক সমঝোতাপত্রের কথা উল্লেখ করেন। ভারী যন্ত্রপাতি উৎপাদন এবং ইঞ্জিনিয়ারিং ক্ষেত্রে চেক প্রজাতন্ত্রের যথেষ্ট সুনাম রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তরপ্রদেশের গাজিপুর সফর করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার উত্তরপ্রদেশের মানুষের উদ্বেগের বিষয়গুলি যথেষ্ট গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করে থাকে। প্রত্যেকের জীবনের মান উন্নত করাই দুই সরকার নিজেদের কর্তব্য বলে মনে করে। শ্রী মোদী বলেন, যে মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস করা হয়েছে, সেটি নির্মিত হওয়ার পর ঐ অঞ্চলে ঐ হাসপাতালে অত্যাধুনিক স্বাস্হ্য পরিষেবা পাওয়া যাবে। কৃষি সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রকল্প সম্পর্কেও শ্রী মোদী ভাষনপ্রসঙ্গে জানান। এরমধ্যে রয়েছে বারাণসীতে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক চাল গবেষনা প্রতিষ্ঠান, বারাণসী এবং গাজিপুরে মাল গুদাম করার বিভিন্ন কেন্দ্র, গোরক্ষপুরের সার কারখানা এবং বনসাগর সেচ প্রকল্প। তিনি বলেন, এ ধরনের উদ্যোগের ফলে কৃষকরা উপকৃত হবেন এবং তাঁদের আয় বাড়াতেও সাহায্য করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাৎক্ষণিক রাজনৈতিক সুবিধা গ্রহণের জন্য ব্যবস্হা গ্রহণ দেশের সমস্যাসমূহে স্হায়ী সমাধান আনতে পারে না। তিনি বলেন, তরিঘাট-গাজিপুর-মউ সেতুর কাজও অনেকটা এগিয়েছে। বারাণসী এবং কলকাতার মধ্যে জলপথ চালু হয়েছে। মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত গ্রহণের পরিপ্রেক্ষিতে আগামী দু’বছরে চিহ্নিত কয়েকটি কয়লা খনি এলাকায় এই গ্যাস আহরণের জন্য অনুসন্ধানের কাজ শুরু করা হবে। ভারতের ইতিহাস দারিদ্র্য, পরাজয় অথবা ঔপনিবেশিকতার কাহিনীমাত্র নয়;অহিংসা,সত্যাগ্রহ এবং সুপ্রশাসনের বার্তাও ভারত থেকে পৌঁছে গেছে দিকে দিকে। ‘সব কা সাথ, সব কাবিকাশ’-এর মূলমন্ত্র হল এটাই। ২০১৫-রনভেম্বরে লন্ডনে মহাপ্রভু বাসবেশ্বরের এক আবক্ষ মূর্তির আবরণ উন্মোচনের সৌভাগ্যতাঁর হয়েছিল বলে প্রসঙ্গত স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। জিস্যাট-১১ উৎক্ষেপণের জন্য বিদেশ থেকে একটি উৎক্ষেপণ যান সংগ্রহের বিষয়টিতে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। নতুন দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৃহস্পতিবারের (৬ ডিসেম্বর) বৈঠকে ভারত ও উজবেকিস্তানের মধ্যে মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহার ও অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে সহযোগিতা স্থাপন সংক্রান্ত চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়েছে। ১ অক্টোবর, ২০১৮ তারিখে উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতির ভারত সফরকালে চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়। এর ফলে, মহাকাশ প্রযুক্তি প্রয়োগের ক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করা সম্ভব হবে যার ফলে মানবজাতি উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মাদ্রিদে স্পেনের প্রেসিডেন্ট মিঃ মারিয়ানো রেজয়-এর সঙ্গেএক আলোচনা-বৈঠকে মিলিত হন। এসম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের কথাবার্তা দু’দেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও নিবিড়করে তোলার কাজে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, পরস্পর সংযুক্ত তথা পরস্পরনির্ভরশীল এই বিশ্ব পরিবেশে পারস্পরিক কল্যাণের লক্ষ্যে একযোগে কাজ করে যেতে পারেভারত ও স্পেন এবং তাতে লাভবান হবে সমগ্র বিশ্বই। প্রেসিডেন্ট রেজয়-কে তিনি একবিশেষ দৃষ্টিভঙ্গী সম্পন্ন নেতা বলে অভিহিত করেন। একবিরাট অর্থনৈতিক সংস্কার কর্মসূচিতে ভারত ও স্পেন যুক্ত রয়েছে বলে বর্ণনা করেনপ্রধানমন্ত্রী। রেল, পরিকাঠামো এবং স্মার্ট নগরী গড়ে তোলার কাজে দু’দেশের সহযোগিতাপ্রসারের বিশেষ সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীবলেন, ভারত ও স্পেনের মধ্যে সম্পর্কের এক নতুন দিগন্ত উন্মোচনের মাধ্যমে নতুন ভারতগড়ে তোলার স্বপ্ন আরও বেশি করে উৎসাহিত হবে । পরেপ্রধানমন্ত্রী এক বৈঠকে মিলিত হন স্পেনের সিইও-দের সঙ্গে। ভারতে স্পেনের বিনিয়োগেরপ্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মত প্রকাশ করা হয় এই বৈঠকে । বিশেষত, পরিকাঠামো, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি,খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, স্বয়ংক্রিয় যান, সুতিবস্ত্র ও রাসায়নিক উৎপাদন ক্ষেত্রে এইবিনিয়োগের সম্ভাবনা বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন যে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘ডিজিটালইন্ডিয়া’ এবং ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ বিশ্বের বিনিয়োগ প্রচেষ্টায় এক চুম্বক শক্তির কাজকরে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী জাগুয়ার ল্যান্ড রোভার নির্মান ইউনিট পরিদর্শন করলেন| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার লন্ডনের ল্যামবেথ-এ বাসবেশ্বরের মর্মরমূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন। এই উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলার ঘটনায় তিনি গভীরভাবে মর্মাহত। তিনি বলেন, এই আক্রমণ কেবলমাত্র ফ্রান্সের জনগণের উপরই হামলা নয়, বরং সমগ্র মানবতার উপর হামলা এবং এখন এই বিশ্বজনীন সমস্যার বিরুদ্ধে বিশ্বজুড়ে সমস্ত মানবতাবাদীদের একজোট হয়ে লড়াই করার সময় এসেছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রসংঘের উচিত সন্ত্রাসবাদের সংজ্ঞা চূড়ান্ত করা। প্রধানমন্ত্রী বাসবেশ্বর-কে একজন মহান দার্শনিক এবং সমাজ সংস্কারক হিসাবে বর্ণনা করেন, যিনি তাঁর সময়ে সামাজিক অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করেছিলেন এবং তৃণমূলস্তরে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করার জন্য কাজ করে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী লন্ডনের কিং হেনরি’স রোডে ড. আম্বেদকর স্মৃতিশালার উদ্বোধন করেন। তিনি ড. আম্বেদকরের মর্মরমূর্তির সামনে প্রদীপ প্রজ্জ্বলন করেন। এই উপলক্ষে তিনি একটি ফলকও উন্মোচন করেন। ভিজিটরস্ বুক-এ তিনি লেখেন, “এটি একটি পূন্যস্থান যে স্থান থেকে ড. আম্বেদকর তাঁর সামনে আগত সমস্ত বাধা-বিপত্তিকে কাটিয়ে তাঁর জ্ঞান অন্বেষণ শুরু করেন।” তিনি বলেন, “এই মহান ব্যক্তিকে প্রণতি জানাই, যিনি নিরলসভাবে সমাজের নিপীড়িত অংশের জনগণের জন্য কাজ করে গিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশ জুড়ে বিভিন্ন উৎসব উপলক্ষে জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রত্যেককে উগাদির শুভেচ্ছা। পবিত্র এই উৎসব উপলক্ষে আপনাদের সকলের প্রত্যাশা পূরণ হোক – আমি এই প্রার্থনা জানাই। প্রত্যেকের আনন্দ ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি। সাজিবু নোঙ্গমা পানবা চেইরাওবা উপলক্ষে মণিপুরবাসীকে আমার শুভেচ্ছা। বিশেষ এই উৎসব আমাদের সমাজে খুশি ও সম্প্রীতির চেতনাকে আরও সুদৃঢ় করুক। এই বছরটি অনেক খুশিতে পূর্ণ হয়ে উঠুক – এই প্রার্থনা করি। আগামী দিনগুলিতে প্রত্যেকের প্রত্যাশা পূরণ হোক। কাশ্মীরী পণ্ডিতদের কৃষ্টি ও সংস্কৃতি প্রকৃত পক্ষেই বিশেষ মর্যাদার দাবি রাখে। ১২৫ কোটি ভারতবাসীরশক্তি ও ক্ষমতায় অভ্যুদয় ঘটতে চলেছে এক নব ভারতের। ভারত ও উন্নয়ন হল এখন সমার্থক। প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কুকে ভারতে স্বাগত জানানোর সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। এর আগে,প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কুকে ভারতে স্বাগত জানানোর আমরা সুযোগ পেয়েছিলাম ১৯৯৭ এবং২০০৭-এ। বর্তমান সফরকালে মাননীয় প্রেসিডেন্ট ভারতের রূপান্তর প্রক্রিয়া ও প্রচেষ্টারঅভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ পাবেন বলে আমরা মনে করি। আজ আমাদেরমধ্যে বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে যে সমস্ত আলাপ-আলোচনা হয়েছে, তা আগামীদিনের পক্ষেবিশেষ বার্তাবহ। গত আড়াই দশকেরও বেশি সময়কাল ধরে আমাদের মধ্যে সম্পর্কের উষ্ণতাই এইআলাপ-আলোচনার বাতাবরণকে বিশিষ্টতা এনে দিয়েছে। এই সম্পর্ককে আরওপ্রসারিত করার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ ও চিন্তাভাবনার শরিক হয়েছি আমরা। সহযোগিতারসবক’টি ক্ষেত্রেইআমরাআলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। তেল ও গ্যাস,ওষুধ, ভারী যন্ত্রপাতি এবং সাজসরঞ্জামের মতো ক্ষেত্রগুলিতে বাণিজ্য ও বিনিয়োগেরঅফুরন্ত সুযোগ রয়েছে। গত বছর ভারতীয় সংস্থাগুলি ওষুধ উৎপাদন ও বিপণনের ক্ষেত্রেতিনটি যৌথ উদ্যোগের এক শুভ সূচনা করেছে যার ফল হয়েছে ইতিবাচক। টায়ার, কৃষিও শিল্পে ব্যবহার্য যন্ত্রপাতি এবং খনির সাজসরঞ্জাম উৎপাদনের ক্ষেত্রেওঅংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। সমানভাবেই, নির্মাণ সংক্রান্তবৃহদাকারের যন্ত্রপাতি উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ভারতের চাহিদা এখন ক্রমবর্ধমান।অন্যদিকে, বেলারুশের রয়েছে শিল্প শক্তি। ‘মেক ইনইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায় প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের যৌথ বিকাশ এবং নির্মাণ ও উৎপাদনসম্পর্কিত কাজকর্মের বিষয়গুলিকেই আমরা উৎসাহ যুগিয়ে যাব। বেলারুশের সুনির্দিষ্টপ্রকল্পগুলিতে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণ সহায়তার যে প্রস্তাব ভারত দিয়েছে, তারযথাযথ ব্যবহারের লক্ষ্যেও আমাদের আলোচনা অনেক দূর এগিয়ে গেছে। বলিষ্ঠতরসহযোগিতার আরেকটি উল্লেখযোগ্য ক্ষেত্র হল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। এই ক্ষেত্রটিতেবেলারুশ হল আমাদের দীর্ঘকালের অংশীদার। ধাতবপদার্থ, ন্যানো-প্রযুক্তি, জীব-বৈচিত্র্য, চিকিৎসা-বিজ্ঞান, রসায়ন এবংইঞ্জিনিয়ারিং-এর মতো ক্ষেত্রগুলিতে বাণিজ্য ও উদ্ভাবন প্রচেষ্টায় বিশেষভাবে জোরদেওয়া হবে। এই প্রক্রিয়ায় যুব সমাজের অংশগ্রহণ নিশ্চিত করার জন্যও আমরা চেষ্টাচালিয়ে যাব। বেলারুশেরনিজস্ব প্রযুক্তির উপস্থাপনার লক্ষ্যে ভারতে একটি প্রযুক্তি উপস্থাপনা কেন্দ্র স্থাপনেরসম্ভাবনার বিষয়টিও আমরা খতিয়ে দেখছি। বেলারুশেরসঙ্গে ভারতের সহযোগিতা প্রসারে উন্নয়ন প্রচেষ্টার মতো বিষয়টিও এক নতুন মাত্রা এনেদিতে পারে। ভারতের অর্থনৈতিক তথাপ্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রসার কর্মসূচিতে বেলারুশহল এক সক্রিয় সহযোগী। আন্তর্জাতিকমঞ্চগুলিতেও পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আমাদের এই দুটি দেশ নিবিড় সহযোগিতাও সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গিকে অনুসরণ করে চলেছে। বহুপাক্ষিকমঞ্চগুলিতে পরস্পরকে সমর্থন জানানোর প্রতিশ্রুতিও পালন করবে ভারত ও বেলারুশ। ভারতীয় সংস্কৃতি,খাদ্য বৈচিত্র্য, চলচ্চিত্র, সঙ্গীত, নৃত্য, যোগাভ্যাস এবং আয়ুর্বেদ চর্চার প্রতিবেলারুশের বহু নাগরিকেরই যে বিশেষ আগ্রহ রয়েছে সেকথা জেনে আমি খুবই আনন্দ অনুভবকরছি। আমাদেরপারস্পরিক সম্পর্কের বনিয়াদকে আরও মজবুত করে তুলতে দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যেপর্যটন বিনিময় এবং সফরসূচি আয়োজনের বিশেষ সম্ভাবনা রয়েছে বলে আমি মনে করি। পরিশেষে,আমাদের এক সম্মানিত অতিথি হিসেবে ভারতে উপস্থিত থাকার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাতেআগ্রহী প্রেসিডেন্ট লুকাশেঙ্কুকে। আজকের বৈঠকে যে সমস্ত বিষয়ে আমরা সহমত হয়েছি তারপথ ধরে এবং বৈঠকের ফলাফলকে অনুসরণ করে ভারত আগামীদিনগুলিতে নিবিড়ভাবে কাজ করে যাবেবেলারুশের সঙ্গে। আগামীকাল, অর্থাৎ ১৯শে মে, জোজিলা সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণ প্রকল্পের সূচনা করতে একদিনের জন্য জম্মু ও কাশ্মীর সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এ বছরের গোড়ার দিকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির এক বৈঠকে এই সুড়ঙ্গ পথ নির্মাণের প্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হয়। এটির নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হলে শ্রীনগর, কার্গিল এবং লেহ-র মধ্যে সকল রকম আবহাওয়ার উপযোগী এক সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা স্থাপিত হবে। এর নির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিক তথা সাংস্কৃতিক বিকাশের প্রভূত সুযোগ ও সম্ভাবনা। তাছাড়া, কৌশলগত দিক থেকেও এই সুড়ঙ্গ পথটির গুরুত্ব হবে অপরিসীম। শ্রীনগরের শের-এ-কাশ্মীর আন্তর্জাতিক সম্মেলনকেন্দ্রে ৩৩০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কিষাণ গঙ্গা জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রটি এদিন জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রীনগর রিং রোডের শিলান্যাসও করবেন তিনি। অন্যদিকে, জম্মুর জেনারেল জোরাওয়ার সিং প্রেক্ষাগৃহে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে পাকুল দাল বিদ্যুৎ প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের পাশাপাশি জম্মু রিং রোডের নির্মাণ কাজেরও সূচনা করবেন তিনি। শ্রী মাতা বৈষ্ণোদেবী তীর্থ পর্ষদের রোপওয়ে এবং তারাকোট মার্গের উদ্বোধনও রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর এদিনের কর্মসূচির মধ্যে। তারাকোট মার্গটি খুলে দেওয়া হলে বৈষ্ণোদেবী দর্শনে বিশেষ সুবিধা হবে লক্ষ লক্ষ তীর্থযাত্রীর। অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনসাধারণের উদ্দেশে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ভারতে যুগে যুগে নানা সমস্যা সমাধানের কাজে সামাজিক ক্ষেত্রের অগ্রণী ভূমিকা পালনের সমৃদ্ধ পরম্পরা রয়েছে। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল-কে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, সর্দার প্যাটেলের সমবায় ক্ষেত্রের প্রয়াসগুলি কখনও ভোলা উচিৎ নয়। প্রধানমন্ত্রী গুজরাটের জনসাধারণকে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে কাজ করার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন যে, এই রকম মূল্য সংযুক্তিকরণ কৃষক ও শিল্প – দুটি ক্ষেত্রকেই উপকৃত করবে। শ্রী মোদী বলেন, একটি দরদী সরকার হিসাবে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্দেশ্যই হল সাধারণ মানুষের জীবনের দুঃখ-দুর্দশাকে লাঘব করে তাঁদের জীবনযাত্রাকে আরও সহজ করে তোলা। রবিবারের এই সমাবেশকে উত্তরপ্রদেশের রূপান্তর প্রচেষ্টারই একটি অঙ্গ বলে তিনি বর্ণনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রস্তাব পেশ থেকে শুরু করে শিলান্যাস অনুষ্ঠান – এই কাজগুলি মাত্র পাঁচ মাসের মধ্যেই যে গতিতে এগিয়ে গেছে, তা এক কথায় অভূতপূর্ব। এই সাফল্যের জন্য রাজ্য সরকারকে অভিনন্দন জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পগুলি রাজ্যের মাত্র কয়েকটি অংশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না, বরং এক সুষম উন্নয়নের কাজে তা বিশেষভাবে সাহায্য করবে। উত্তরপ্রদেশ সরকারের নতুন কর্মসংস্কৃতির সপ্রশংস উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাজ্যের পরিবর্তিত বিনিয়োগ পরিস্থিতি কর্মসংস্থান, ব্যবসা-বাণিজ্য, পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহ, ভালো রাস্তাঘাট নির্মাণ এবং সর্বোপরি এক উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার পথ প্রশস্ত করে তুলেছে। কারণ এই সমস্ত প্রকল্প থেকে একদিকে যেমন বহু নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে, অন্যদিকে তেমনই সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ প্রকল্পগুলি থেকে নানাভাবে উপকৃতও হবেন। ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ এবং ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র মতো প্রধান প্রধান কর্মসূচিগুলি এই সমস্ত প্রকল্প রূপায়ণের ফলে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে বলে মনে করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমস্ত রকম দ্বিধা-দ্বন্দ্ব দূর করে কেন্দ্রীয় সরকার এখন বিশেষভাবে জোর দিয়েছে সমাধান ও সমন্বয় প্রচেষ্টার ওপর। প্রধানমন্ত্রীর মতে, পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির কাজ সম্পূর্ণ হওয়ার সাথে সাথে ভারতে বাণিজ্যিক কাজকর্ম ক্রমান্বয়ে সহজতর হয়ে উঠবে এবং সার্বিকভাবে ব্যয়ের বোঝা বা মাত্রাও অনেকাংশেই হ্রাস পাবে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনে উদ্যোগী হতে তিনি আহ্বান জানান ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোগীদের উদ্দেশে। দেশে বিদ্যুতের যোগান ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তোলার লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের কথা বলেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশ যে ক্রমশঃ চিরাচরিত জ্বালানি থেকে পরিবেশ-বান্ধব জ্বালানি ব্যবহারের দিকে এগিয়ে চলেছে, একথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে তিনি বলেন যে সৌরশক্তি তথা সৌর জ্বালানির একটি বিশেষ কেন্দ্র হয়ে উঠবে উত্তরপ্রদেশ। ভারতে জ্বালানি শক্তির ঘাটতি ২০১৩-১৪ আর্থিক বছরের ৪.২ শতাংশ থেকে বর্তমানে ১ শতাংশেরও নিচে নেমে এসেছে বলে জানান তিনি। ভিয়েতনামন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট মিসেস নগুয়েন থি কিম নগান শুক্রবার এখানে একসাক্ষাৎকারে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। এবছর সেপ্টেম্বর মাসে ভিয়েতনাম সফরকালে হ্যানয়-এ তাঁদের দু’জনের মধ্যে যে বৈঠকঅনুষ্ঠিত হয় মিসেস কিমের সঙ্গে এখানে সাক্ষাৎকারকালে তার স্মৃতিচারণ করেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “মুফতি সাহেবের মৃত্যু জম্মু ও কাশ্মীরে এক বিরাট শূন্যতা এনে দিয়েছে। তাঁর দৃষ্টান্তমূলক নেতৃত্ব মানুষের জীবনে বড় প্রভাব ফেলেছিল। তাঁর দীর্ঘ রাজনৈতিক জীবনে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে বহু গুণমুগ্ধের সম্মান তিনি পেয়েছেন। তাঁর নেতৃত্বে জম্মু ও কাশ্মীরে ক্রমে স্থিতিশিল হয়ে উঠছিল। আমরা সকলে তাঁর অভাব অনুভব করব। ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ উদ্যোগের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছিলেন, “সর্দার প্যাটেল আমাদের এক ভারত দিয়েছিলেন। এখন ১২৫ কোটি ভারতীয়র আন্তরিক দায়িত্ব হ’ল সমবেতভাবে শ্রেষ্ঠ ভারত গড়ে তোলা”। দেশের বীর ও সাহসী ব্যক্তিদের যাঁরা দেশের একতা, নিরাপত্তা, সার্বভৌমত্ব এবং আমাদের প্রিয় রাষ্ট্রের উন্নয়নে নিজেদের উৎসর্গ করেছেন, নরেন্দ্র মোদী তাঁদের যথাযথ সম্মান ও শ্রদ্ধা নিবেদনই বিশ্বাস করেন। তিনি চান, আমাদের ইতিহাস ও ঐতিহ্য দেশের প্রতি গর্ব ও জাগ্রতবোধের অঙ্গ হয়ে উঠুক। ডান্ডিতে গড়ে ওঠা জাতীয় লবণ সত্যাগ্রহ স্মারক অন্যতম একটি দৃষ্টান্ত। এই স্মারক মহাত্মা গান্ধী ও তাঁর ৮০ জন সত্যাগ্রহীর ১৯৩০ সালের ডান্ডি অভিযানের উদ্যমতা ও শারীরিক সক্ষমতাকে যথাযথ সম্মান জানায়। সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল নামাঙ্কিত ১৮২ মিটার উচ্চতাবিশিষ্ট স্ট্যাচু অফ ইউনিটি বা একতার মূর্তি এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিশ্বের সর্বাধিক উচ্চতাবিশিষ্ট এই মূর্তিটি নির্মাণের প্রথম পরিকল্পনা করেছিলেন নরেন্দ্র মোদী, যখন তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলেন। কয়েক দশক ধরেই নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর পরিবার তাঁর জীবনের নানা ঘটনার সঙ্গে যুক্ত ফাইলগুলি জনসমক্ষে আনার দাবি জানিয়ে আসছিলেন। একের পর এক সরকার এই ফাইল প্রকাশের ব্যাপারে দৃঢ় সিদ্ধান্ত নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ২০১৫-র অক্টোবরে নরেন্দ্র মোদী, যখন তাঁর বাসভবনে নেতাজীর পারিবারিক সদস্যদের আপ্পায়ন করেছিলেন, তখন বলেছিলেন, ইতিহাসকে দমন করার কোনও কারণ আমি অন্তত দেখছি না। তাঁর অভিমত ছিল, যাঁরা ইতিহাসকে ভুলে যান, তাঁরা ইতিহাস রচনার ক্ষমতাও হারিয়ে ফেলেন। অত্যন্ত সুচারু রূপে নেতাজী সম্পর্কিত ফাইলগুলি প্রকাশ করা হয়েছে এবং সেগুলি ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মের মাধ্যমে জনসমক্ষে আনা হয়েছে। গত শতাব্দীর চারের দশকের মাঝামাঝি সময়ে লালকেল্লায় আইএনএ-র বিরুদ্ধে আদালতের বিচার সমগ্র জাতিকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। অবশ্য, কয়েক দশক ধরে লালকেল্লার যে কক্ষে বিচারপর্ব চলেছিল, সেই কক্ষটির স্মৃতির অতলে সলিল সমাধি ঘটেছিল। এ বছর সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মজয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লার ঐ কক্ষে একটি সংগ্রহালয়ের উদ্বোধন করেন, যেটি নেতাজী ও ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মির প্রতি উৎসর্গ করা হয়েছে। ১৮৫৭-র স্বাধীনতা যুদ্ধ এবং জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের সঙ্গে জড়িত নানা ঘটনাও সামগ্রী এই সংগ্রহালয়গুলিতে প্রদর্শিত হয়েছে। বিপর্যয় মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত পুলিশ কর্মীদের যথাযথ সম্মান জানাতে নরেন্দ্র মোদী সম্প্রতি নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু নামাঙ্কিত পুরস্কার প্রদানের কথা ঘোষণা করেছেন। বিগত চার বছরে আমাদের ইতিহাসের বহু বিখ্যাত ও গুণী ব্যক্তির অসামান্য অবদানকে স্মরণে রেখে একাধিক স্মারক ও সৌধ নির্মাণ করা হয়েছে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন শ্রী মোদী কচ্ছে শ্যামজী কৃষ্ণ ভার্মার স্মৃতিতে একটি স্মারক উদ্বোধন করেছিলেন। মহান সমাজ সংস্কারক শ্রী ছোটুরামের স্মৃতিতে শ্রী মোদী হরিয়ানায় একটি মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন। আরব সাগরে মুম্বাই উপকূলে শিবাজীর স্মৃতিতে শ্রী মোদী সম্প্রতি একটি স্মারক গড়ে তোলার শিলান্যাস করেন। দিল্লিতে জাতীয় বিজ্ঞান কেন্দ্রে প্রধানমন্ত্রী সর্দার প্যাটেল গ্যালারির উদ্বোধন করেছেন। দেশের সেবায় সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকারী ৩৩ হাজার পুলিশ কর্মীর সাহসিকতা ও আত্মবলিদানকে সম্মান জানাতে সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পুলিশ স্মারকের উদ্বোধন করেছেন। সমস্ত স্মৃতিসৌধ বা স্মারক সর্বোচ্চ আত্মত্যাগের সেই সমস্ত ঘটনাকে স্মরণ করিয়ে দেয়, যাঁরা আমাদের জন্য আরও উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে মহান অবদানের সাক্ষী হয়ে রয়েছেন। এরা সকলেই বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে প্রেরণার উৎস। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিরপৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার ভারত ও সোমালিয়ার মধ্যে দণ্ডিত ব্যক্তিদের প্রত্যার্পণেরজন্য চুক্তি স্বাক্ষর ও এর পরবর্তী অনুসমর্থনের জন্য অনুমোদন দিল| এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে সোমালিয়ায় বন্দীভারতীয় অথবা ভারতে বন্দী সোমালিয়ার নগরিক যার যার দেশের কারাগারে গিয়ে তাদেরপরিজনদের কাছাকাছি থেকে কারাদণ্ডের মেয়াদের বাকি অংশ কাটাতে পারবেন এবং এর মধ্যদিয়ে সমাজে তাদের পুনর্বাসনে সহায়তা করা হবে| দুই দেশের উদ্যোগে গড়ে উঠলে এই যৌথ প্রকল্পটি উত্তরপ্রদেশ প্রতিরক্ষা করিডর কর্মসূচিতে আরও গতি সঞ্চার হবে। প্রধানমন্ত্রী এই উপলক্ষ্যে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন, শিক্ষা, স্বাস্হ্য ও উৎপাদন সংক্রান্ত কর্মসূচি রয়েছে। কর্মসূচিগুলি রুপায়িত হলে উত্তরপ্রদেশের পাশাপাশি আমেঠি অঞ্চলের মানুষ প্রত্যক্ষভাবে লাভবান হবেন। প্রধানমন্ত্রী কউহারে এক জনসভাতেও ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশজুড়ে নাগরিকদের নববর্ষের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন। একগুচ্ছ টুইটে প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে নববর্ষ আনন্দ,শান্তি ও সমৃদ্ধি এনে দিক বলে কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন “ ভারত জুড়ে নতুনবছরের শুভারম্ভ উদযাপন করছে। সকলকে নববর্ষের শুভেচ্ছা। নতুন বছরটা শান্তি, আনন্দ ওসমৃ্দ্ধি বয়ে নিয়ে আসুক এই কামনা করি। ” আগামী বছরটা আপনাদের সবারইচ্ছাপুরণ করুক এবং সর্বত্রই যেন সুখ-শান্তি বিরাজ করে। ” ” সিন্ধি সম্প্রদায়ের মানুষদের জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। ভগবান ঝুলেলাল যেনআমাদের আর্শীবাদ করেন। ” “ সবশেষে মহারাষ্ট্রের জনগণকে গুড়ি পাড়োয়া উপলক্ষে অভিনন্দন জানাই। গুজরাটে তিনি মুখ্যমন্ত্রীথাকাকালীন সৌরাষ্ট্রের দুগ্ধোৎপাদন প্রকল্পগুলির কিভাবে বিকাশ ঘটে তারও প্রসঙ্গতঃস্মৃতিচারণ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯ তারিখে উত্তর প্রদেশের গ্রেটার নয়ডায় ইন্ডিয়া এক্সপো সেন্টারে পেট্রোটেক – ২০১৯ শীর্ষক অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করবেন। তিনি এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেও ভাষণ দেবেন। পেট্রোটেক – ২০১৯ হ’ল ভারতের ফ্ল্যাগশিপ হাইড্রো কার্বন কনফারেন্স। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রকের উদ্যোগে ত্রয়োদশ আন্তর্জাতিক তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস সম্মেলন ও প্রদর্শনী, পেট্রোটেক – ২০১৯ – এর আয়োজন করা হচ্ছে। ১০ থেকে ১২ই ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত তিনদিনের এই বিশাল সম্মেলনে ভারতের তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রের সাম্প্রতিক বাজার এবং বিনিয়োগকারী সহায়ক উন্নয়নমূলক বিভিন্ন বিষয় তুলে ধরা হবে। অংশীদার দেশগুলির শক্তি দপ্তরের ৯৫ জন মন্ত্রী ছাড়াও ৭০টি দেশের প্রায় ৭ হাজার প্রতিনিধি এই সম্মেলনে যোগ দেবেন। সম্মেলনের পাশাপাশি, গ্রেটার নয়ডার এক্সপোমার্টে প্রায় ২০ হাজার বর্গমিটার এলাকা জুড়ে একটি প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে। তিনি বলেছিলেন, ভারতের শক্তি ক্ষেত্রের চারটি স্তম্ভ রয়েছে। এগুলি হ’ল – শক্তির সম্ভাবনা, শক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতা, শক্তি ক্ষেত্রের ধারাবাহিক বিকাশ এবং শক্তি ক্ষেত্রের নিরাপত্তা। আগামীকাল, অর্থাৎ ১৬ মার্চ মণিপুর সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। সেখানে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৫তম অধিবেশনে ভাষণ দেবেন তিনি। ইম্ফলহল উত্তর-পূর্ব ভারতের দ্বিতীয় শহর যেখানে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের অধিবেশনঅনুষ্ঠিত হতে চলেছে। লুয়াংসংবাম-এ লুয়াংপোকপা স্পোর্টস কমপ্লেক্সে জাতীয় ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়,১ হাজার অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র, শিক্ষক, চিকিৎসক ও নার্সদের জন্য ১৯টি আবাসনকমপ্লেক্স এবং অন্যান্য উন্নয়ন প্রকল্পের এদিন শিলান্যাস করবেন তিনি। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে নারীশক্তির প্রতি সম্মান ও অভিবাদন জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক নারী দিবস উপলক্ষে নারীশক্তির অদম্য উৎসাহ, সংকল্প ও নিষ্ঠাকে আমি সম্মান জানাই। ভারত সরকারেরবিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হ’ল নারীশক্তির অর্থনৈতিক ক্ষমতায়ন,স্বনির্ভরতা এবং সামাজিক ক্ষেত্রে সমতা নিশ্চিত করা। আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার! দু’দিন আগেই আমরা প্রচুর উৎসাহের সঙ্গে সাধারণতন্ত্রের উৎসব উদ্‌যাপন করেছি। প্রিয় দেশবাসী, শ্রীমান প্রকাশ ত্রিপাঠী ‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’-এ একটি লম্বা চিঠি লিখেছেন এবং আমাকে বিশেষভাবে অনুরোধ করেছেন যেন তাঁর চিঠির বিষয়গুলি আমি ছুঁয়ে যাই। উনি লিখেছেন, পয়লা ফেব্রুয়ারি দিনটি মহাকাশ অভিযাত্রী কল্পনা চাওলার পুণ্যতিথি। কলম্বিয়া মহাকাশযান দুর্ঘটনায় তিনি আমাদের ছেড়ে চলে গেছেন বটে, কিন্তু সেই সঙ্গে দুনিয়ার লক্ষ যুবককে প্রেরণা দিয়ে গেছেন। আমি প্রকাশ ভাইয়ের কাছে কৃতজ্ঞ যে তিনি তাঁর লম্বা চিঠিখানি শুরু করেছেন কল্পনা চাওলার বিদায়ের প্রসঙ্গ দিয়ে। কল্পনা চাওলা-কে আমরা যে এত অল্প বয়সে হারালাম, এটা যদিও সকলের জন্য খুবই দুঃখের কথা, কিন্তু নিজের জীবন দিয়ে তিনি তামাম বিশ্বের, বিশেষতঃ ভারতের কয়েক সহস্র নারীর কাছে এই সংবাদ পৌঁছে দিলেন যে, নারীশক্তির জন্য কোনও সীমারেখা নেই। ইচ্ছা আর দৃঢ় সংকল্প থাকলে, কিছু করে দেখাবার থাকলে, কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। এটা দেখে খুব আনন্দ হয় যে, ভারতে আজ মহিলারা সর্বক্ষেত্রেই অত্যন্ত দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছেন এবং দেশের গৌরব বৃদ্ধি করছেন। প্রাচীন কাল থেকে আমাদের দেশে মহিলাদের সম্মান, সমাজে তাঁদের স্থান এবং অংশগ্রহণ সারা দুনিয়াকে অবাক করেছে। ভারতীয় বিদূষী নারীদের দীর্ঘ এক পরম্পরা রয়েছে। বেদের যুগ থেকেই ভারতের বহু বিদূষী মহিলার অবদান রয়েছে। লোপামুদ্রা, গার্গী, মৈত্রেয়ী – কত না নাম তাঁদের। অর্থাৎ, একটি কন্যা দশটি পুত্রের সমান। দশটি পুত্রসন্তান থেকে যতটা পুণ্য লাভ হবে, একটি কন্যা সন্তান থেকেও ততখানি পুণ্যই মিলবে। এটি আমাদের সমাজে নারীর মহত্ত্ব নিরূপণ করে। আর সেইজন্যেই তো আমাদের সমাজে নারীকে শক্তির প্রতীক বলে মানা হয়েছে। দেশের মান-সম্মান বাড়িয়ে এসেছে। শ্রীমান প্রকাশ ত্রিপাঠী এরপর আরও বেশকিছু উদাহরণ দিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, আমাদের সাহসী প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলা সীতারামণের যুদ্ধবিমান ‘সুখোই-30’-র উড়ান তাঁকে প্রেরণা দেবে। বর্তিকা যোশীর নেতৃত্বে ভারতীয় নৌসেনার মহিলা ক্রু মেম্বররা INSV Tarini–তে যে বিশ্বপরিক্রমা করছেন, প্রকাশ তারও উল্লেখ করেছেন। তিন বাহাদুর মহিলা – ভাবনা কণ্ঠ, মোহনা সিং এবং অবনী চতুর্বেদী ফাইটার পাইলট হয়েছেন এবং ‘সুখোই-30’-এ প্রশিক্ষণ নিচ্ছেন। ক্ষমতা বাজপেয়ীর নেতৃত্বে all women crue এয়ার ইণ্ডিয়ার বোয়িং জেটে দিল্লি থেকে আমেরিকার সান ফ্রান্সিসকো হয়ে আবার দিল্লিতে ফিরে এলেন। এঁদের প্রত্যেকেই মহিলা। কিছুদিন আগে মাননীয় রাষ্ট্রপতি মহোদয় এক নতুন উদ্যোগ নিয়েছেন। মাননীয় রাষ্ট্রপতি সেইসব অসাধারণ মহিলাদের একটি দলের সঙ্গে দেখা করেন, যাঁরা নিজের নিজের ক্ষেত্রে সবার আগে কিছু করে দেখিয়েছেন। দেশে এইসব কীর্তিমান মহিলা – মার্চেন্ট নেভির প্রথম মহিলা ক্যাপ্টেন, প্যাসেঞ্জার ট্রেনের প্রথম মহিলা ড্রাইভার, প্রথম মহিলা দমকলকর্মী, প্রথম মহিলা বাস ড্রাইভার, অ্যাণ্টার্টিকা বিজয়ী প্রথম মহিলা, মহিলাদের মধ্যে যিনি প্রথম এভারেস্ট শিখরে পৌঁছান – এইরকম প্রতি ক্ষেত্রের ‘ফার্স্ট লেডি’রা। আমাদের এই নারীশক্তি সমাজের রক্ষণশীলতাকে ভেঙে এক অসামান্য কীর্তি অর্জন করেছে। তাদের নতুন এক শক্তি, নতুন উৎসাহে পূর্ণ করে দেবে। এইসমস্ত কীর্তিমান মহিলা, first lady-দের বিষয়ে একটি পুস্তকও তৈরি হয়েছে, যাতে পুরো দেশ তাঁদের বিষয়ে জানতে পারে, তাঁদের জীবন ও কাজ থেকে উৎসাহ পায়। এটি ‘নরেন্দ্র মোদী ওয়েবসাইট’-এও ই-বুক হিসেবে পাওয়া যাচ্ছে। আজ দেশ ও সমাজে যত ইতিবাচক পরিবর্তন সাধিত হচ্ছে, তাতে দেশের নারীশক্তির গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। আজ যখন আমরা মহিলাদের ক্ষমতায়ন নিয়ে আলোচনা করছি, তখন আমি একটি রেলস্টেশনের উল্লেখ করতে চাই। একটি রেলস্টেশন এবং নারীর ক্ষমতায়ন — আপনারা হয়ত ভাবছেন এ-দুটির মধ্যে কী যোগাযোগ থাকতে পারে! মুম্বইয়ের মাটুঙ্গা স্টেশন হল ভারতের প্রথম রেলস্টেশন যেখানে সব কর্মচারীই মহিলা। সব বিভাগেই মহিলা কর্মী — কমার্শিয়াল ডিপার্টমেন্ট হোক, রেলওয়ে পুলিশ হোক, টিকিট চেকিং, অ্যানাউন্সিং, পয়েণ্ট পার্সন —চল্লিশেরও বেশি কর্মীর সকলেই মহিলা। এবার অনেকেই সাধারণতন্ত্র দিবসের কুচকাওয়াজ দেখার পর ট্যুইটার বা অন্য কোনও সোস্যাল মিডিয়ায় লিখেছেন যে, এবারের কুচকাওয়াজে মুখ্য বিষয় ছিল BSF Biker Contingent, যেখানে অংশগ্রহণকারীরা সকলেই মহিলা। তাঁদের এই সাহসিকতার প্রদর্শনী বিদেশ থেকে আসা অতিথিদেরও আশ্চর্য করেছে। নারীর ক্ষমতায়ন এবং আত্মনির্ভরতার এ-ও এক রূপ। খুব অল্প সময়েই সেখানকার অনেক মহিলা এই প্রচেষ্টায় নিজেদের যুক্ত করেছেন। এর ফলে লাভ হচ্ছে তিনটি — একদিকে স্বরোজগার, যা তাঁদের স্বনির্ভর করছে এবং যার ফলে মাওবাদী প্রভাবিত অঞ্চলের চেনা ছবিও বদলে যাচ্ছে। আমরা প্রায়শই শুনেছি যে লোকেরা বলেন কিছু বিষয় এমন আছে যে আমাদের অস্তিত্ব মুছে ফেলা যায় না। বিষয়টি হচ্ছে, flexibility transformation, যা অপ্রয়োজনীয় হয়ে পরেছে তাকে ত্যাগ করা। যা প্রয়োজনীয়, তার সংশোধন স্বীকার করা দরকার। এটিই আমাদের সংস্কৃতি, যা আমরা পূর্বসূরিদের কাছ থেকে পেয়েছি। যে কোন চলমান সমাজের পরিচয় তার স্ব-সংশোধনকারী প্রক্রিয়া। সামাজিক কু-রীতি এবং কু-সংস্কারের বিরুদ্ধে শত শত বছর যাবৎ আমাদের দেশে ব্যক্তিগত এবং সামাজিক স্তরে ক্রমান্বয়ে সফল প্রয়াস চলেছে। এই কিছু দিন আগে বিহার রাজ্য একটি অভিনব প্রয়াস করেছে। রাজ্যের সামাজিক কু-রীতিগুলিকে সমূলে উৎপাটনের লক্ষ্যে বিশ্বের সব থেকে বড়, ১৩০০০ কিলোমিটাররও বেশি লম্বা মানব শৃঙ্খল বানানো হয়েছিল। এই অভিযানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষকে বাল্যবিবাহ এবং পণ প্রথার মত সামাজিক কুপ্রথার বিরুদ্ধে সচেতন করা হয়। সমস্ত রাজ্য একসঙ্গে এইসব কু-প্রথার বিরুদ্ধে লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সংকল্প গ্রহণ করে। শিশু, বৃদ্ধ, উৎসাহে ভরপুর যুব সম্প্রদায়, মা, বোনেরা সকলে এই লড়াইয়ে নিজেদের যুক্ত করেছিলেন। পাটনার ঐতিহাসিক গান্ধী ময়দান থেকে শুরু করে এই মানবশৃঙ্খল রাজ্যের সীমা পর্যন্ত বিস্তৃত ছিল। উন্নয়নের সুফল যাতে সমাজের সকল মানুষ ঠিকমতো উপভোগ করতে পারেন সেই জন্য সমাজকে এই সকল কুপ্রথা থেকে মুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন। আসুন, আমরা সকলে মিলিত ভাবে সমাজ থেকে এই সকল কু-প্রথা শেষ করতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই এবং এক New India – নূতন, শক্তিশালী, সমর্থ ভারত নির্মাণ করি। সমাজের কল্যাণে তাঁরা যে বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছেন, সেই কারণে আমি বিহারের সাধারণ মানুষ, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, সেখানকার প্রশাসন এবং মানব-শৃঙ্খলে অংশগ্রহণকারী সকলের প্রশংসা করছি। প্রধানমন্ত্রী জন-ঔষধী প্রকল্প বিষয়ে উনি কিছু জানতেন না। ‘জন ঔষধী’ কেন্দ্র সম্পর্কে বিশদে জানার পর তিনি সেখান থেকে ওষুধ কেনেন এবং তাতে প্রায় ৭৫ শতাংশ খরচ কমে গেছে। উনি আগ্রহ জানিয়েছেন যে, ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আমি যেন এই বিষয়ে আলোচনা করি, যাতে অধিক সংখ্যক মানুষ বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত হন এবং লাভান্বিত হন। গত বেশ কিছুদিন যাবৎ অনেক মানুষ আমাকে এই বিষয়ে লিখছেন এবং বলছেন। আমি সোশ্যাল মিডিয়াতেও অনেক মানুষের ভিডিও দেখেছি, যাঁরা এই প্রকল্পে উপকৃত হয়েছেন। এই ধরনের খবর পেলে খুশি হই। গভীর সন্তুষ্টি পাওয়া যায়। এই প্রকল্পর উদ্দেশ্য হচ্ছে স্বাস্থ্যসেবাকে affordable করা এবং সহজ, সরল জীবনযাপনকে উৎসাহ দেওয়া। জন-ঔষধী কেন্দ্রতে যে সব ঔষধ পাওয়া যায়, সেগুলির দাম বাজারে উপলব্ধ ব্র্যান্ডেড ওষুধের তুলনায় ৫০ শতাংশ থেকে ৯০ শতাংশ সস্তা। এর থেকে জনসাধারণের, বিশেষ করে প্রতিদিন ঔষধ সেবন করেন এরকম বয়স্ক নাগরিকদের আর্থিক সহায়তা হয়, অনেক সাশ্রয় হয়। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার দ্বারা নির্দিষ্ট standard–এর হিসাবে এই জন-ঔষধী কেন্দ্রে generic medicine বিক্রয় হয়। এই কারণেই উৎকৃষ্ট quality-র ওষুধ কম দামে পাওয়া যায়। সারা দেশে এখন পর্যন্ত তিন হাজারেরও বেশি ‘জন-ঔষধী কেন্দ্র’ স্থাপন করা হয়েছে। এতে কেবল সস্তায় ওষুধ পাওয়া যাচ্ছে তা নয়, উপরন্তু নিজ-উদ্যমীদের জন্য রোজগারের সুযোগ তৈরি হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জন-ঔষধী কেন্দ্র এবং হাসপাতালের অমৃত স্টোরে সস্তায় ওষুধ পাওয়া যায়। প্রিয় দেশবাসী, মহারাষ্ট্র থেকে শ্রীমান মঙ্গেশ ‘নরেন্দ্র মোদী মোবাইল অ্যাপ’-এ একটি ছবি শেয়ার করেছেন। এই ছবিটা এমনই যে আমি তার প্রতি আকৃষ্ট হয়ে পড়ি। ঐ ছবিতে এক নাতি তার দাদুর সঙ্গে ‘Clean Morna River’ স্বচ্ছতা অভিযানে অংশ নিয়েছে। দুঃখের বিষয় যে, নদীটি পুরোপুরি জংলি ঘাস এবং কচুরিপানাতে ভরে গেছে। নদীতে এবং নদীর ধারে প্রচুর নোংরা ফেলা হচ্ছিল। একটি অ্যাকশন প্ল্যান তৈরি করে প্রথম ধাপে মকর সংক্রান্তির একদিন আগে অর্থাৎ ১৩-ই জানুয়ারি, ‘মিশন ক্লিয়ার মোরনা’ অভিযানে চার কিলোমিটার এলাকার ১৪-টি জায়গায় মোরনা নদীর দুই তীর পরিষ্কার করা হয়। এর থেকে বোঝা যায় যে মানুষ যদি কিছু করবে বলে কৃতসংকল্প হয়, তাহলে কোনও কিছুই অসম্ভব নয়। জন আন্দোলনের মাধ্যমে বড় বড় পরিবর্তন আনা সম্ভব। আকোলার জনগণকে, ওখানকার জেলা এবং করপোরেশন-এর প্রশাসনকে এবং এই জন আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত সব নাগরিককে, আপনাদের এই প্রচেষ্টার জন্য আমি অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি, আপনাদের এই প্রচেষ্টা দেশের অন্যান্যদেরও উৎসাহিত করবে। আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘পদ্ম’ পুরস্কারের বিষয়ে আপনারাও নিশ্চয় আজকাল অনেক আলোচনা শুনছেন। খবরের কাগজে, টেলিভিশনেও এই বিষয়ে মানুষের দৃষ্টি আকর্ষিত হচ্ছে। এখন যে কোনও নাগরিক যে কোনও ব্যক্তিকে মনোনীত করতে পারেন। অনলাইন হয়ে যাওয়ার ফলে পুরো ব্যবস্থার মধ্যে স্বচ্ছতা এসেছে। এই পুরস্কারের নির্বাচন পদ্ধতিতে একপ্রকার আমূল পরিবর্তন এসেছে। পুরষ্কার দেওয়ার জন্য এখন ব্যক্তির পরিচয় নয়, তাদের কাজকেই গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। শ্রী অরবিন্দ গুপ্তাজী-র কথা আপনারা শুনেছেন? আপনারা আনন্দিত হবেন যে কানপুর আই-আই-টি’র ছাত্র অরবিন্দজী শিশুদের জন্য খেলনা বানাতে নিজের সারা জীবন ব্যয় করেছেন। বিজ্ঞানের প্রতি শিশুদের অনুসন্ধিৎসু করতে উনি গত চার দশক ধরে আবর্জনা থেকে খেলনা তৈরি করেন। শিশুরা যাতে অপ্রয়োজনীয় জিনিসকে বৈজ্ঞানিক ভাবে ব্যবহার করতে শেখে, তার জন্য সারা দেশে তিন হাজার বিদ্যালয়ে গিয়ে ১৮টি ভাষাতে তৈরি ফিল্ম দেখিয়ে তাদের উৎসাহিত করছেন। কী অদ্ভুত জীবন – কী অদ্ভুত উৎসর্গ! কর্ণাটকের সিতাবা জোদত্তির গল্পও এইরকমই আকর্ষক! কেবল এতটুকু নয়, দলিত মহিলাদেরও কল্যাণের জন্য ওঁর অভূতপূর্ব অবদান রয়েছে। আপনি হয়তো মধ্যপ্রদেশের ভজ্জু শ্যামের নাম শুনেছেন, শ্রী ভজ্জু শ্যামের জন্ম একেবারেই দরিদ্র পরিবারে, এক আদিবাসী পরিবারে হয়েছিল । জীবনযাপনের জন্য উনি সাধারণ চাকরি করতেন কিন্তু ওঁর প্রথাগত আদিবাসী Painting তৈরি করার শখ ছিল। আজ এই শখের জন্য উনি কেবল ভারতবর্ষে নয় সমগ্র পৃথিবীতে সম্মানিত হয়েছেন। Netharlands, Germany, England, Italy-র মত বিভিন্ন দেশে ওঁর Paintingপ্রদর্শিত হয়েছে। বিদেশে ভারতের নাম উজ্জ্বল করা ভজ্জু শ্যামজীর প্রতিভাকে স্বীকৃত দিয়ে তাঁকে পদ্মশ্রী সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। কেরলের আদিবাসী মহিলা লক্ষ্মী কুট্টীর কথা শুনলে আপনি অবাক হয়ে যাবেন। লক্ষ্মী কুট্টী কল্লারের এক শিক্ষিকা, আর এখনও ঘন জঙ্গলে আদিবাসী এলাকাতে তালপাতা দিয়ে তৈরি ঝুপড়িতে বসবাস করেন। লক্ষ্মীজী ভেষজ ওষুধ তৈরির জ্ঞানের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে সমাজের সেবা করে আসছেন। এই অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে খুঁজে সমাজে তাঁর অবদানের জন্য, তাঁকে পদ্মশ্রী পুরস্কারে সম্মানিত করা হয়েছে। সুভাষিনী মিস্ত্রী এরকম এক মহিলা যিনি হাসপাতাল তৈরি করতে অন্যের ঘরে বাসন মেজেছেন, সব্জী বিক্রি করেছেন। ওঁর যখন ২৩ বছর বয়স তখন বিনা চিকিৎসায় ওঁর স্বামী মারা যান এবং এই ঘটনাই ওঁকে গরীবদের জন্য হাসপাতাল তৈরি করতে উৎসাহ জুগিয়েছে। এঁরা মান সম্মানের জন্য কাজ করেন না কিন্তু এঁদের কাজে আমরা অনুপ্রাণিত হই। স্কুল বা কলেজে ডেকে এঁদের অভিজ্ঞতার কথা শোনা দরকার। পুরস্কার প্রদানের আগে, সামাজিক স্তরেও এই বিষয়ে প্রচেষ্টা থাকা উচিত। আমার প্রিয় দেশবাসী, প্রত্যেক বছর ৯-ই জানুয়ারী আমরা ‘প্রবাসী ভারতীয় দিবস’ পালন করি। এই ৯ই জানুয়ারীতে পূজনীয় মহাত্মা গান্ধী দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে ভারতে ফিরে আসেন। এই দিন আমরা ভারত এবং পৃথিবীর অন্যান্য প্রান্তে বসবাসকারী ভারতীয়দের মধ্যে যে অটুট বন্ধন রয়েছে তার আনন্দ উপলব্ধি করি। এবছর ‘প্রবাসী ভারতীয় দিবস’-এ আমরা এক অনুষ্ঠানের আয়োজন করেছিলাম, যেখানে বিশ্বের নানা প্রান্তে থাকা ভারতীয় বংশোদ্ভূত সমস্ত সাংসদ এবং মেয়রদের আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। আপনারা জেনে আনন্দিত হবেন, এই অনুষ্ঠানে Malaysia, New Zealand, Switzerland, Portugal, Mauritius, Fiji, Tanzania, Kenya, Canada, Britain, Surinam, দক্ষিণ আফ্রিকা, America এবং অন্যান্য অনেক দেশ থেকে যেখানকার মেয়র বা সাংসদ ভারতীয় বংশোদ্ভূত, তাঁরা সবাই অংশগ্রহণ করেছিলেন। আমি খুশি হয়েছি, বিভিন্ন দেশে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূত এই সব লোকেরা ওই সব দেশের সেবা তো করছেনই, সঙ্গে সঙ্গে তাঁরা ভারতের সাথেও মজবুত সম্বন্ধ বানিয়ে রেখেছেন। আমি ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের এই অতুলনীয় কাজের জন্য ধন্যবাদ দিচ্ছি, ভারতীয় বংশোদ্ভূত মানুষদের স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য, আর ওঁদের মাধ্যমে পৃথিবী জুড়ে লোকেদের মধ্যে এটা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য। ৩০শে জানুয়ারী পূজনীয় বাপুর পুণ্য-তিথি, যিনি আমাদের সবাইকে এক নতুন রাস্তা দেখিয়েছেন। যদি আমরা সঙ্কল্প করি যে বাপুর দেখানো পথে চলব, যতটা পারি, চলি – এর থেকে বড় শ্রদ্ধাঞ্জলি আর কি হতে পারে? আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের সবাইকে ২০১৮-র শুভকামনা জানিয়ে আমার বক্তব্য শেষ করছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ! প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী শ্রী শিনজো আবে শনিবার নয়াদিল্লিতে ভারত-জাপান বিজনেস লিডারস্‌ ফোরমের সামনে বক্তব্য রাখেন। গত বছর তাঁর জাপান সফরের প্রসঙ্গ প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন এবং জাপান কর্তৃক ভারতে ৩৫ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করার প্রতিশ্রুতির কথাও তিনি উল্লেখ করেন। শ্রী নরেন্দ্র মোদি বলেন, মেক-ইন-ইন্ডিয়া কেবলমাত্র ভারতেই নয়, জাপানেও মিশন মোডে চলছে। তিনি বলেন যে, পরীক্ষামূলক নীতি হিসাবে “জাপান প্লাস” উদ্যোগ নেওয়া হয়েছিল, সেটিও ভালভাবেই চলছে। ভারত ও জাপানের সাম্প্রতিককালের অর্থনৈতিক সংকেত বা উপাদানগুলির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উভয়দেশের এইসব উপাদানগুলি, বিশেষত: বিশ্বব্যাপী আর্থিক মন্দার প্রেক্ষিতে যথেষ্ঠ উৎসাহব্যঞ্জক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতবর্ষ হল সম্ভাবনা সমূহের দেশ। আমার সমাসীন রাষ্ট্রপতি মুগাবে, এটা সত্যিকারের এক ঐতিহাসিক দিন| সমগ্র আফ্রিকাকে শোনার সুযোগ আমাদের হয়েছে| বানজুল সুত্র মেনে আমাদের প্রথম দুটি সম্মেলনে কয়েকটি মাত্র দেশ যোগ দেওয়ায় তা সীমাবদ্ধ ছিল| আফ্রিকার ৫৪ টি দেশই এবার অংশগ্রহণ করায় আমরা সম্মানিত| আপনাদের এই সাড়াদানে এটা নিশ্চিত হয়েছে, ভারত ও আফ্রিকার সম্মেলনের জন্য এটাই সঠিক রূপ | আপনারা এখানে প্রত্যেকের চিন্তাধারা ব্যক্ত করে আমি প্রত্যেকের পরই গভীর কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি| আপনাদের বন্ধুদের প্রজ্ঞার চেয়ে ভালো শিক্ষা দিতে পারে এমন আর কিছুই নেই| আপনাদের বন্ধুত্ব ও বিশ্বাস আমাদের মহান গর্ব ও শক্তির উৎস| আপনাদের বক্তব্য শুনে আমার এই প্রত্যয় আরও দৃঢ় হয়েছে যে, ভারত ও আফ্রিকার বন্ধুত্ব সম্পূর্ণ সহজাত ও অকৃত্রিম| কারণ আমাদের নিয়তি ঘনিষ্টভাবে সংযুক্ত এবং আমাদের প্রত্যাশা ও প্রতিকুলতাতেও অনেক মিল| সার্বিক প্রবৃদ্ধি, সক্ষম নাগরিক ও সুস্থায়ী উন্নয়নের ওপর ভিত্তি করে সমৃদ্ধ আফ্রিকা, সংহত ও সাংস্কৃতিকভাবে উন্নত আফ্রিকা এবং শান্তিপূর্ণ ও নিরাপদ আফ্রিকার লক্ষ্যে আপনাদের দৃষ্টিভঙ্গি উপলব্ধি করার জন্য আমরা আপনাদের সঙ্গে কাজ করব—যার যোগ্য বৈশ্বিক অবস্থান রয়েছে এবং বিশ্বের জন্য যা শক্তিশালী সহযোগী| আমাদের অংশিদারিত্বকে কীভাবে আরও কার্যকরী রূপ দেওয়া যায়, তা আমি মনযোগ দিয়ে শুনেছি| সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আমাদের সহযোগিতাকে আরও শক্তিশালী করে তুলব এবং এর বিরুদ্ধে এক সাধারণ উদ্দেশ্য গড়ে তুলতে বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ করব| মহামান্যগণ, কোন ধারণা ও কাজ এবং পরিকল্পনা ও রূপায়নের মধ্যেকার দুরত্ব সম্পর্কে আমরা সচেতন| সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের পুনর্গঠনে, বৈশ্বিক বানিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য পূরণে, ২০৩০-কে লক্ষ্য করে উন্নয়নের ক্ষেত্রে বৈশ্বিক সহযোগিতা এবং জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে প্যারিস সম্মেলন থেকে আমাদের প্রত্যাশাকে অনুধাবন করার ক্ষেত্রে আমরা আমাদের সহযোগিতা ও সহায়তাকে আরও জোরদার করে তোলা উচিত| আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ও আকাঙ্ক্ষা থেকে নির্মিত বিশ্ব আমাদেরকে আরও বেশি সাফল্যের সুযোগ দেবে| আজ, আমরা এই সম্মেলনের ঘোষণাপত্র এবং সামরিক কৌশলগত সহযোগিতার কাঠামো গ্রহণ করেছি| কিন্তু, এতসব কাগজপত্র ও নথিপত্রের চেয়েও বড় কথা হচ্ছে, আমরা আমাদের বন্ধুত্বকে পুনর্জীবিত করতে পেরেছি এবং সহযোগিতাকে শক্তিশালী করার পাশাপাশি সংহতিকে সুদৃঢ় করতে পেরেছি| মান্যবরগণ, আমাদের সম্মেলনের লক্ষ্যমাত্রা এবং আমাদের সহযোগিতার উচ্চাশার জন্য আমরা এই সম্মেলন প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর করার জন্য সম্মিলিতভাবে সম্মত হয়েছি| এই সম্মেলনকে বিশেষভাবে সফল করে তলার জন্য আমি আমার সহকর্মী মন্ত্রীদের, আমাদের আধিকারিকদের এবং দিল্লি শহরকে ধন্যবাদ জানাই| এই দিনের শেষে আমাদের বন্ধুত্ব আপনাদের কাছ থেকে নতুন শক্তি ও উদ্দেশ্য নিয়ে উজ্জীবিত হবে এবং ভবিষ্যতে বিশ্বকে তা এক নতুন বিশ্বাস দেবে| বিগত ১০০ বছরেপাটনা উচ্চ আদালত এক নতুন মাত্রায় উন্নীত হয়েছে। প্রযুক্তির ক্ষমতা ও সম্ভাবনার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদালতের কাজকর্মের প্রতিটি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির আশ্রয় গ্রহণ একান্ত জরুরি। আপনাদের এই সুন্দরভাবেসাজানো শহরে আমাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানানোর জন্য আপনাদের সকলকে অনেক অনেকধন্যবাদ। এই সুন্দরদেশের এক উজ্জ্বল বৈশিষ্ট্য হল এখানকার প্রাণময় বৈচিত্র্য। ডারবান শহরএবং কোয়াজুলু ন্যাটাল ছাড়া আর কোন শহরেই বৈচিত্র্যের এই সমাহার লক্ষ্য করা যায় না।এ হল বহুত্ববাদের এক বিশেষ উদযাপনযার মধ্যে রয়েছে : আপনারা আমাকেশুধুমাত্র সম্মানিতই করেননি, আমার দেশের ১২৫ কোটি নাগরিককে এর মাধ্যমে আপনারা মান্যতাদানকরেছেন। আজ এখানে আমার একথা উল্লেখ করার কারণ দক্ষিণ আফ্রিকায় ভারতের আগমন শুরু হয়১৮৬০ সাল থেকেই। ঐ বছর ১৬ নভেম্বর তারিখে ট্রুরো জাহাজটি ৩৪২ জন ভারতীয়কে নিয়ে এসেপৌঁছয়ন্যাটাল বন্দরের উপকূলে। কিন্তুতাঁরা জীবনযাপন করেন শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থেই নয়। বন্ধুগণ, মানুষে-মানুষে সম্পর্ক স্থাপনের যেইতিহাসকে আমরা বহন করে চলেছি, তা আধুনিক যুগের অংশীদারিত্বের সম্পর্কের ক্ষেত্রেএক বলিষ্ঠ বনিয়াদ গড়ে তুলতে পেরেছে। ভারত বর্তমানে এক অর্থনৈতিক রূপান্তরের মধ্যদিয়ে এগিয়ে চলেছে। অন্যদিকে, দক্ষিণ আফ্রিকা হল আফ্রিকার অর্থনীতির এক অগ্রণী পথপ্রদর্শক। এই খেলাটির জন্য আবেগ ওভালোবাসা আমাদের দু’দেশের সমাজেই যথেষ্ট গভীর ও সুদূরপ্রসারী। আমাদের পারস্পরিকসম্পর্কের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে রয়েছে ক্রিকেট। কিন্তু ভারতের অর্থনৈতিক উন্নয়নপ্রচেষ্টা শুধুমাত্র তার নিজের সামাজিক কল্যাণেই চালিত হচ্ছে না। এক্ষেত্রেঅংশীদারিত্বের সম্পর্ক আমরা প্রসারিত করেছি আফ্রিকা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার মতোআমাদের বন্ধু রাষ্ট্রগুলির বৃহত্তর কল্যাণেও। আজ এর আগে আমি পরিদর্শন করে এসেছিফিনিক্স। ফ্রান্সের জনসাধারণের শোক, ব্যাথা ও যন্ত্রণা আমরা অনুভব করতে পারছি। এই ধরনের মর্মান্তিক ঘটনার মোকাবিলায় সবসময়ই ফ্রান্সের জনসাধারণের পাশেই থাকবে ভারত। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এ সংক্রান্ত প্রোটোকলটিকে অনুমোদন দেওয়া হয়। এই প্রোটোকল অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে কর সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য বিনিময় করা হয়। ব্যাঙ্ক সম্পর্কেও তথ্য এই বিনিময়ের আওতায় পড়ে। বন্ধুগণ,আমরা বিশ্বাস করি যে, সম্ভাবনা + নীতি + পরিকল্পনা + সম্পাদনইআমাদের প্রগতির পথে নিয়ে যেতে পারে। তিনি জানান,টাস্ক ফোর্সটির কাজ হবে খেলাধূলা সংক্রান্ত সুযোগসুবিধার প্রসার, খেলোয়াড়দেরপ্রশিক্ষণ ও অনুশীলন, নির্বাচন পদ্ধতি এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে একসামগ্রিক কৌশল স্থির করা। দেশের এবং বিদেশের ক্রীড়া বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গড়ে তোলা হবেএই বিশেষ টাস্ক ফোর্সটি। এই বন্দর কর্তৃপক্ষগুলি হল – ভি ও চিদাম্বরনার বন্দর কর্তৃপক্ষ, চেন্নাই বন্দর কর্তৃপক্ষ এবং কামরাজার বন্দর কর্তৃপক্ষ। বর্তমানে ভারতে মাত্র কয়েকটি বন্দরে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে মাল ওঠা-নামা সংক্রান্ত পরিকাঠামোগত সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। ফলে, জাহাজে মাল পরিবহণের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সুযোগ-সুবিধা গ্রহণের জন্য ভারত’কে নির্ভর করতে হয় কলম্বো ও সিঙ্গাপুরের মতো আন্তর্জাতিক বন্দরগুলির ওপর। এর ফলে, প্রতি বছরই ভারতীয় বন্দর শিল্প ক্ষেত্রকে রাজস্ব অর্জনের ক্ষেত্রে ক্ষতি স্বীকার করতে হয় ১৫০০ কোটি টাকার মতো। এই পরিস্থিতিতে এনায়ামে একটি বড় বন্দর স্থাপিত হলে সবদিক দিয়েই বিশেষ লাভবান হবে ভারত। ডঃ রাম মনোহর লোহিয়ার জন্মবার্ষিকীতে তাঁর উদ্দেশে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনকরেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বৈদগ্ধ ও অনুসন্ধিৎসা এবং তৃণমূল পর্যায়ের রাজনীতির মধ্যে তিনিসমন্বয়সাধন করেছিলেন। তাঁর সমৃদ্ধ চিন্তাভাবনা আর্থ-সামাজিক কর্মপ্রচেষ্টাকে আজওপথ দেখিয়ে চলেছে। সেই সঙ্গে, ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও তাঁরা বিশেষ আশাবাদী বলে ঘোষণা করেন। সি.ই.ও.রা বিশেষ করে উৎসাহ দেখান ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচি সম্পর্কে। তাঁরা বলেন যে, ভারতীয় অর্থনীতিতে বর্তমানে যে উন্নয়নের নতুন জোয়ার এসেছে তা এক্ষেত্রে বিকাশের গতিকে আরও ত্বরান্বিত করবে। একইসঙ্গে তাঁরা টেলিভিশন ব্যবস্থাকে দ্রুত ডিজিটাল করে তুলতে এবং সেলুলার তথা মোবাইল পরিকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে বৈঠকে আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং সি.ই.ও.’রা এই মর্মে একমত হন যে, সাম্প্রতিককালে প্রচার মাধ্যম ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে যে সমস্ত পরিবর্তন সূচিত হয়েছে তার ফলে জ্ঞানের জগতে গণতান্ত্রিকতার ব্যাপক প্রসার ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব এখন প্রযুক্তিচালিত এক যুগের মধ্য দিয়ে চলেছে, যেখানে ব্যবহারিক পরিকাঠামোর সঙ্গে সঙ্গে ডিজিটাল পরিকাঠামোর উন্নয়নও বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের ছয় লক্ষ গ্রামকে ব্রডব্যান্ড সংযোগের আওতায় নিয়ে আসা হবে বলেও তিনি সি.ই.ও.দের অবহিত করেন। একুশ শতকের নাগরিকদের কথা চিন্তা করে সেইভাবে তৈরি থাকার জন্য তিনি সি.ই.ও.দের আহ্বান জানান। মানবসম্পদ উন্নয়নের ক্ষেত্রে ডিজিটাল প্রযুক্তির যে বিশেষ একটি ভূমিকা রয়েছে সেকথাও প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন। গণতন্ত্রকে আরও মজবুত করে তুলতে এবং ভারতের উন্নয়নের প্রেক্ষাপটে ডিজিটাল প্রযুক্তির এক প্রধান ভূমিকা রয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। ‘এক পদ এক পেনশন’ নীতি রূপায়ণের বিষয়টি কর্মপরবর্তী অনুমোদন লাভ করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বিজ্ঞান প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ক্ষেত্রে ভারত ও উজবেকিস্তানের মধ্যে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তিতে মঞ্জুরি দিয়েছে। ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে বাহিনীরকর্মীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল, আপনাদের বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। গত সপ্তাহটি ছিল বেলজিয়ামের পক্ষে খুবই দুর্ভাগ্যজনক। গত ৮ দিনে বেলজিয়ামবাসী যে গভীর দুঃখ ও যন্ত্রণা অনুভব করেছেন, আমরা সকলেই তার সমব্যথী। সন্ত্রাসের মতো সাধারণ একটি চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় আমাদের সমবেত প্রচেষ্টার অঙ্গ হিসেবে পারস্পরিক আইনগত সহায়তা চুক্তির আলোচনা আমরা পুনরায় শুরু করতে পারি। সাজাপ্রাপ্ত বন্দী অপরাধীদের বিনিময় ও প্রত্যর্পণের বিষয়টিতেও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা প্রয়োজন। আমাদের এই দুটি দেশের মধ্যে রয়েছে মৈত্রী সম্পর্কের এক সুদীর্ঘ ইতিহাস। আজ থেকে ১০০ বছর আগে ১ লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি ভারতীয় সেনা বেলজিয়ামের মাটিতে এখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে সামিল হয়েছিল প্রথম বিশ্ব যুদ্ধে। ঐ ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ৯ হাজারেরও বেশি ভারতীয় সেনা। ভারত-বেলজিয়াম কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০তম বার্ষিকী উদযাপিত হবে আগামী বছর। আমাদের মৈত্রী সম্পর্কের সমগ্র বিষয়টি নিয়ে আমি কথা বলেছি প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল-এর সঙ্গে। দ্বিপাক্ষিক বিদেশ নীতি সংক্রান্ত শলাপরামর্শের মাধ্যমে আমাদের এই অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আরও উন্নত হয়ে উঠবে বলে আমরা আশাবাদী। বর্তমান বিশ্বে ভারত হল এক উজ্জ্বলতম অর্থনৈতিক সম্ভাবনার দেশ। বেলজিয়ামের দক্ষতা ও ক্ষমতা এবং ভারতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি একত্রে দু’দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সুযোগ-সুবিধার সম্ভাবনাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাবে বলে আমাদের বিশ্বাস। আজ সকালের দিকে বেলজিয়ামের সি ই ও’দের সঙ্গে এক ফলপ্রসূ আলোচনায় এদেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে উপস্থিত ছিলাম আমিও। ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’, ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ এবং ‘স্কিল ইন্ডিয়া’র মতো ভারতের উচ্চাকাঙ্খামূলক প্রকল্পগুলিতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণের জন্য আমি সাদর আমন্ত্রণ জানিয়েছি বেলজিয়ামের সরকার ও শিল্পপতিদের। ভারতে নির্মাণ ও উৎপাদনের সুযোগ গ্রহণ করে বেলজিয়ামের বাণিজ্য সংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে পণ্য সরবরাহের ক্ষেত্রে এক বিশেষ নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে পারে। এই অংশীদারিত্ব শিল্প-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতাকে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করতে পারে। স্পষ্টতই শুধুমাত্র হীরক খন্ডই আমাদের এই সম্পর্ককে উজ্জ্বল করে তুলতে পারে না। জলবায়ু পরিবর্তন মানবজাতির কাছে এক বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে প্রধানমন্ত্রী মিশেল-এর সঙ্গে আমিও সম্মতি জানিয়েছি। উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারতের অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্রগুলির অন্যতম হল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রগতি এবং উচ্চ কারিগরি ব্যবস্থা গড়ে তোলা। এই ক্ষেত্রগুলিতে বেলজিয়ামের সাহায্য ও সহযোগিতাকে স্বাগত জানাতে আমরা প্রস্তুত। কিছুক্ষণ আগেই প্রধানমন্ত্রী মিশেল এবং আমি যুগ্মভাবে ভারতের বৃহত্তম অপটিক্যাল টেলিস্কোপটিকে দূরসংবেদী ব্যবস্থায় সক্রিয় করে তুলতে পেরেছি। দু’দেশের মধ্যে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক কতদূর এগিয়ে যেতে পারে এই ঘটনা তারই একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, শ্রুতি তথা দৃশ্য মাধ্যমের উপযোগী পণ্য উৎপাদন, পর্যটন, জৈব প্রযুক্তি এবং বন্দর ও জাহাজ চলাচলের ক্ষেত্রে বেশ কিছু চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারেও আমরা এগিয়ে গেছি। আর মাত্র কয়েক ঘন্টা পরেই ত্রয়োদশ ভারত-ইউরোপীয় ইউনিয়ন শীর্ষ বৈঠকে ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মিলিত হ আমি। ইউরোপীয় ইউনিয়ন হল আমাদের শক্তিশালী কৌশলগত অংশীদারদের অন্যতম। ভারত ও ইউরোপীয় ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কে আমরা আলোচনা করব এই শীর্ষ বৈঠকে। ভারত ও ইউরোপীয়ান ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ চুক্তি সম্পাদনের মধ্য দিয়ে ভারতের বলিষ্ঠ অর্থনীতির সুফল ভোগ করতে পারবে বেলজিয়াম সহ ইউরোপের সবকটি দেশ। প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেল যেভাবে আমাকে স্বাগত ও আপ্যায়ন জানিয়েছেন এবং সময় ব্যয় করেছেন সেজন্য আমি আবার তাঁর কাছে আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। ভারতে তাঁকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রইলাম। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নজিরবিহীনভাবে আসন্ন রিও অলিম্পিকে ভারতের প্রতিনিধিত্বকারী ৬০ জন ক্রীড়াবিদদের প্রত্যেকের সঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে এক আলাপচারিতায় মিলিত হন। খেলোয়াড়দের প্রত্যেককেই উৎসাহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা পর্যটন ক্ষেত্রে ভারত ও আর্জেন্টিনার মধ্যে সমঝোতাপত্র (মউ) স্বাক্ষরে অনুমোদন দিয়েছে। তিনি তাঁর ভাষণে বিশ্বে সন্ত্রাসবাদের চ্যালেঞ্জের বিষয়টি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। সন্ত্রাসবাদের ব্যবহার বা তার সমর্থন থেকে দূরে থাকা উচিত সবক’টি দেশেরই। তবে, সামাজিক কাঠামোর মধ্যে থেকে এবং যুবশক্তিকে সঙ্গে নিয়েই আমাদের এই কাজে এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশ ‘UNCLOS’ –এর সাহায্যে তাদের নৌ-সীমানার বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছে। স্বামী বিবেকানন্দের মূর্তির আবরণ উন্মোচন প্রধানমন্ত্রী রামকৃষ্ণ মিশনে স্বামী বিবেকানন্দের একটি মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন। এই উপলক্ষে প্রদত্ত এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বামী বিবেকানন্দ শুধুমাত্র একজন ব্যক্তি মানুষই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শতাব্দী প্রাচীন ভারতীয় সংস্কৃতির এক আত্মাপুরুষ। উপনিষদ থেকে শুরু করে উপগ্রহ পর্যন্ত ভারতীয় সংস্কৃতির সুপ্রশস্ত বিস্তৃতির বিষয়টি যদি আমরা উপলব্ধি করতে পারি, তাহলে স্বামী বিবেকানন্দকে আমরা উপলব্ধি করব আমাদের অন্তঃস্থলেই। বিশ্ব যে সময়ে বস্তুবাদ ও আধ্যাত্মিকতার টানাপোড়েনে দিশাহারা হয়ে পড়েছিল স্বামী বিবেকানন্দ তখন ভারতীয় আধাত্মিকতার বার্তা বহন করে নিয়ে গিয়েছিলেন পাশ্চাত্যে। গত দু’দিন ধরে আমি যে আসিয়ান শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণ করলাম, তাতে একটি বিষয়েরই বারংবার পুনরাবৃত্তি ঘটেছে, তা হল ‘অভিন্ন ও ঐক্যবদ্ধ এশিয়া’। এই ধারণাটির প্রথম জন্ম দিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ স্বয়ং। বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তে প্রত্যেক ভারতবাসীর মধ্যেই নিহিত রয়েছে ভারতবর্ষ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের কাছে স্বাধীন ভারত অনেক দিক দিয়েই ঋণী। বিভিন্ন সময়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম রচিত হয়েছে মালয়েশিয়ার অনাবাসী ভারতীয়দের সংগ্রাম ও উৎসর্গের মধ্য দিয়ে। আপনাদের পূর্ব পুরুষরা দলে দলে যোগ দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস এবং আজাদ হিন্দ ফৌজ-এর সঙ্গে। মহিলারা বিপুল সংখ্যায় স্বচ্ছন্দ গৃহকোণ থেকে বেরিয়ে এসে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে গেছেন নেতাজি সুভাষ বোসের সঙ্গে। ভারতের স্বাধীনতার লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার যে সমস্ত ভারতীয় তাঁদের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন তাঁদের উদ্দেশে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ৭০ বছর আগে এক ভয়ঙ্কর ও করুণ পরিণতির মধ্য দিয়ে বিশ্বযুদ্ধের অবসান ঘটেছে। মালয়েশিয়ার রণক্ষেত্রে যে অসংখ্য ভারতীয় সেনা তাঁদের জীবন বিসর্জন দিয়েছেন, তাঁদের উদ্দেশেও জানাই আমার অন্তরের শ্রদ্ধা। জীবন উৎসর্গকারী অনেকেই ছিলেন শিখ সম্প্রদায়ের মানুষ। তাঁদের রক্তে রয়েছে মালয়েশিয়ার মাটির টান। তাই এই যুদ্ধ ছিল এমনই একটি বিষয় যার প্রভাব পড়েছে আমাদের দুটি দেশের ওপরই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে সবচেয়ে বৃহত্তম হুমকি হল সন্ত্রাসবাদ। কারণ সন্ত্রাস কোন সীমানা মানে না। ধর্মের নামে সন্ত্রাস মানুষকে কাছে টেনে নিতে চায়। কিন্তু তা অলীক ও মিথ্যা। সন্ত্রাস সমস্ত ধর্ম-বিশ্বাসের মানুষেরই ঘাতক। তাই ধর্ম ও সন্ত্রাসকে আমাদের পৃথক করে দেখতে হবে। যারা মানবতায় বিশ্বাস করে না, তারাই শুধু সন্ত্রাসের পথে পা বাড়ায়। একথা আমি আগেও বলেছি, আজ এখানেও তার পুনরাবৃত্তি করছি। বর্তমান যুগের এই বৃহত্তম চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সমগ্র বিশ্বকেই একজোট হয়ে এগিয়ে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী যে সমস্ত ছেলেমেয়েদের পড়াশোনা চালিয়ে যাওয়ার মতো সামর্থ্য ছিল না, তাদের আর্থিক সহায়তাদানের লক্ষ্যে মালয়েশিয়ার জন্য ১৯৫৪ সালে গঠন করা হয় ভারতীয় ছাত্র ট্রাস্ট তহবিল। মালয়েশিয়ায় ভারতীয় সম্প্রদায়ের অনেকের কাছেই এই তহবিলের প্রয়োজনীয়তা এখনও রয়েছে। এই ট্রাস্ট তহবিলকে আরও সমৃদ্ধ করতে আমরা আরও এক মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সাহায্য দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছি। দু’দেশের শিক্ষাগত ডিগ্রিকে স্বীকৃতি দেওয়া উচিত ভারত ও মালয়েশিয়া দুটি দেশেরই। প্যাসিফিকপেনশন অ্যান্ড ইনভেস্টমেন্ট (পিপিআই) সংস্থার প্রেসিডেন্ট মিঃ লিওনেল সি জনসন-এরনেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল সোমবার এখানে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীভারতের বিনিয়োগ সম্ভাবনার ক্ষেত্রগুলি সম্পর্কে তাঁদের অবহিত করেন। বাণিজ্যিককাজকর্ম সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে সাম্প্রতিককালে গৃহীত সংস্কার উদ্যোগ এবং বিভিন্নপদক্ষেপের বিষয়গুলিও তিনি আলোচনাকালে তুলে ধরেন প্রতিনিধিদের কাছে। শ্রী মোদীবলেন, ভারতীয় জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান আশা-আকাঙ্ক্ষা এবং দেশের বলিষ্ঠ অর্থনৈতিকভিত্তি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে এক বিশেষ সুযোগ সৃষ্টি করেছে। বিশেষ করে,পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি এবং জৈব কৃষি পদ্ধতি ক্ষেত্রে বিনিয়োগের সম্ভাবনা যেপ্রচুর একথাও তিনি উল্লেখ করেন তাঁদের কাছে। শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের কাজকর্মের অগ্রগতিখতিয়ে দেখার সময় ইপিএফও, ইএসআইসি এবং শ্রম কমিশনারদের সম্পর্কে জনসাধারণের ক্ষোভ ওঅভিযোগের নিষ্পত্তির বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী। এই উদ্যোগে সাড়া দিতে ১৩টি রাজ্য ইতিমধ্যেইপ্রয়োজনীয় আইন সংশোধনের কাজ সম্পূর্ণ করেছে। যে রাজ্যগুলিতে এই উদ্যোগ গ্রহণের কাজএখনও বাকি রয়েছে, সেগুলিতে জাতীয় কৃষি বাজার গড়ে তোলার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট আইনসংশোধনের কাজ দ্রুত শেষ করার আর্জি জানান প্রধানমন্ত্রী । দেশের জাতীয় কৃষি বাজারগুলিতে উৎপাদিত পণ্যবিক্রির মাধ্যমে কৃষকরা যাতে লাভজনক দাম পেতে পারেন সেজন্য সংশ্লিষ্ট সকলেরইউদ্যোগ গ্রহণের প্রয়োজন বলে তিনি মনে করেন। এই বিষয়টিতে বিভিন্ন রাজ্যেরমুখ্যসচিবদের মতামতও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তেলেঙ্গানা, ওড়িশা, মহারাষ্ট্র, কেরল,উত্তরপ্রদেশ, দিল্লি, পাঞ্জাব, হিমাচল প্রদেশ, সিকিম, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড এবংবিহারে রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ এবং প্রাকৃতিক গ্যাস ক্ষেত্রের প্রধান প্রধান পরিকাঠামোক্ষেত্রগুলির কাজকর্মের বিষয়টিও এদিনের মঞ্চে পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী।নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে প্রকল্পের কাজ সম্পূর্ণ করারও নির্দেশ দেন তিনি। শ্রী মোদীবলেন, প্রকল্প রূপায়ণের কাজে বিলম্ব ঘটলে ব্যয় বৃদ্ধির পাশাপাশি জনসাধারণের কাছে বিভিন্নকর্মসূচির সুফল পৌঁছে দেওয়ার কাজও বিলম্বিত হয়ে পড়ে। এদিন প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্টযে সমস্ত প্রকল্পের কাজ ও অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন তার মধ্যে ছিল হায়দরাবাদ ওসেকেন্দ্রাবাদের বহু উদ্দেশ্যসাধক পরিবহণ ব্যবস্থার দ্বিতীয় পর্যায়, অঙ্গমালি-শবরীমালারেলপথ, দিল্লি-মীরাট এক্সপ্রেসওয়ে, সিকিমের রেনক-পাকিয়ং সড়ক প্রকল্প এবং পূর্বভারতের বিদ্যুৎ পরিকাঠামো প্রকল্পের শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে পঞ্চম পর্বেরকর্মসূচিগুলি। এছাড়াও, উত্তরপ্রদেশে ফুলপুর-হলদিয়া গ্যাস পাইপলাইন প্রকল্পটিও ছিলপ্রধানমন্ত্রীর পর্যালোচনার অন্তর্গত । ‘অম্রুত’ কর্মসূচির অগ্রগতি সম্পর্কেও এদিন‘প্রগতি’র মঞ্চে কথাবার্তা বলেন প্রধানমন্ত্রী। এই কর্মসূচির আওতায় ৫০০টি শহরেরঅধিবাসীদের কাছে বিশুদ্ধ পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টি নিশ্চিত করার জন্য তিনিঅনুরোধ জানান সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবদের। শ্রী মোদী বলেন, হিন্দিতে ‘নগর’বলে যে শব্দটি ব্যবহৃত হয় তার সামান্য অদলবদল করে ‘নল’কে পানীয় জল, ‘গুট্টার’অর্থাৎ, পরিচ্ছন্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং ‘রাস্তা’ অর্থাৎ, সড়ক – এই তিনটিরউন্নয়নের কথা তুলে ধরতে পারি আমরা। ‘অম্রুত’কে নাগরিক-কেন্দ্রিক সংস্কার কর্মসূচিরএকটি লক্ষ্য বলে চিহ্নিত করেন তিনি । সংশ্লিষ্ট অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে বক্তব্য রাখতেগিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এই ধরনের কর্মসূচি সরকারি সবক’টি দপ্তরেই শুরু হওয়াউচিত। বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলা সম্পর্কে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিকপ্রতিবেদনটির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে রাজ্যের মুখ্যসচিব এবংকেন্দ্রীয় সরকারের সচিবদের উচিত এই প্রতিবেদনটি পাঠ করে তার বিশ্লেষণ ওসম্ভাবনাগুলির দিকে নজর দেওয়া। আগামী এক মাসের মধ্যে এ বিষয়ে একটি রিপোর্ট পেশকরার জন্য তিনি নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে থেকে এবং তা পর্যালোচনার নির্দেশদেন ক্যাবিনেট সচিবকে। বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির কাজ দ্রুত রূপায়ণেরলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশের দিন এক মাস এগিয়ে আনা হচ্ছে বলে উল্লেখ করেনপ্রধানমন্ত্রী। এই সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সবক’টি রাজ্যকেই তাদের পরিকল্পনাআগেভাগেই জানাতে বলেন তিনি যাতে এই বিশেষ উদ্যোগের সর্বোচ্চ সুফল লাভ করা যায়। দীর্ঘ ১০ বছরেরওবেশি সময় ধরে ধারাবাহিকভাবে সংস্হার প্রকৃতিগত ও আর্থিক কাজকর্মে মন্দা চলতে থাকায়এবং ভবিষ্যৎ পুনরুজ্জীবনের সম্ভাবনা কম থাকায় সিদ্ধান্ত গৃহীত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাবৈঠকে আজ রেল মন্ত্রকের অধীনস্হ রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্হা বার্ন স্ট্যান্ডার্ড কোম্পানীলিমিটেড-কে বন্ধ করে দেওয়ার প্রস্তাবে অনুমোদন দিল। সরকার আর্থিক ও অন্যান্যসহায়তা যুগিয়ে যাওয়া সত্ত্বেও দীর্ঘ ১০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সংস্হার বাস্তবিক ওআর্থিক কাজকর্মে ধারাবাহিকভাবে মন্দা চলতে থাকায় এবং ভবিষ্যতে পুনরুজ্জীবনেরসম্ভাবনা কম থাকার দরুন-ই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই পদক্ষেপের ফলে লোকসানে চলা বার্নস্ট্যান্ডার্ড-এর জন্য ব্যয় করা সরকারি অর্থ সাশ্রয় হবে আর তা অন্যান্য উন্নয়নমূলককাজে লাগানো যাবে। সরকার বিচ্ছেদমূলক প্যাকেজের জন্য এবং কোম্পানীর বর্তমান দায় মিটিয়েফেলার লক্ষ্যে ৪১৭.১০ কোটি টাকা দেবে। বার্ন স্ট্যান্ডার্ড সংস্হা ১৯৭৬ সালে বার্ন অ্যান্ড কোম্পানীরজাতীয়করণ এবং ১৯২৭ সালে ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ড ওয়াগন কোম্পানী লিমিটেড-এর সঙ্গেসংযুক্তিকরণের ফলে গড়ে ওঠে। ১৯৯৪ সালে কোম্পানীকে বিআইএফআর-এ পাঠানো হয় আর পরেরবছরেই এটি রুগ্ন ঘোষিত হয়। ধন্যবাদ শান্তনু, জন, সত্য, পল, সুন্দর এবং ভেঙ্কটেশ আপনাদের বিশেষ ধন্যবাদ! সবাইকে শুভ সন্ধ্যা!. আমাদের নতুন পৃথিবীতে এগুলো আমাদের নতুন প্রতিবেশী| যদি ফেসবুক কোনো দেশ হতো, তাহলে এটা হতো তৃতীয় জনবহুল এবং সবচেয়ে সংযুক্ত দেশ| গুগল এখন শিক্ষকদের অনেক কম ভীতিপ্রদ করে দিয়েছে এবং দাদু-ঠাকুমাদের করে দিয়েছে কর্মহীন| কমপিউটার থেকে যোগাযোগ, বিনোদন থেকে শিক্ষা, ছাপানো নথি-পত্র থেকে ছাপানো পণ্য এবং এখন ইন্টারনেট—স্বল্প সময়ের মধ্যে অনেক পথ অতিক্রম করে আসা গেছে| পরিচ্ছন্ন বিদ্যুত থেকে উন্নত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং নিরাপদ পরিবহন, সবকিছুই এখন আপনি যেখানে কাজ করছেন তার আশেপাশেই রয়েছে| হরিয়ানার এক পিতার ‘সেলফি উইথ ডটার’ পদক্ষেপ এখন কন্যা সন্তানের প্রতি মনোযোগ বাড়ানোর জন্য বিশ্বজুড়ে আন্দোলনের জন্ম দিয়েছে| মহাকাশ প্রযুক্তি ও ইন্টারনেট ব্যবহারের মাধ্যমে গত কয়েক মাসে আমরা ১৭০টি এমন আবেদনপত্র বাছাই করতে পেরেছি, যার মাধ্যমে আরো ভালো প্রশাসন ব্যবস্থা সম্ভব এবং এর মাধ্যমে উন্নয়নকে আরো গতিশীল করা সম্ভব| যখন ভারতের কোনো এক গ্রামের একজন ছোট হস্তকারু শিল্পী নিউ ইয়র্কের মেট্রোর কোনো যাত্রীর মুখে হাসি ফোটান; যখন কিরঘিজ গণতন্ত্রের কোনো দুর্গম হাসপাতালের হৃদরোগীর চিকিত্সা দিল্লিতে বসে কোনো চিকিত্সক করে থাকেন, যেভাবে আমি বিশকেক-এ দেখেছি, তখন আমরা জানি যে এমন কিছু আমরা তৈরী করেছি যা আমাদের জীবনকে মৌলিকভাবে পরিবর্তিত করেছে| তাদের উত্তর আমাকে বিস্মিত করেছে| ডিজিট্যাল যুগে মানুষের জীবনকে পরিবর্তিত করার সুযোগ এসেছে, যে পরিবর্তনের কথা আমরা কয়েক দশক আগে পর্যন্ত ভাবতে পারতাম না| এদেশের আশি কোটি মানুষের বয়স পয়ত্রিশ বছরের কম| তারা পরিবর্তনের জন্য অধীর হয়ে আছে এবং তা অর্জনে আগ্রহী হয়ে আছে| আমরা Ebiz পোর্টাল গড়ে তুলেছি ব্যবসার জন্য, নাগরিকরা যাতে তাদের লক্ষ্যের প্রতি মনোযোগ দিতে পারেন এবং তাদেরকে সরকারী পদ্ধতির জন্য যাতে শ্রম ব্যয় করতে না হয়| আমরা উন্নয়নের গতি ও মাত্রা বাড়াতে প্রযুক্তিকে ব্যবহার করতে চাই| তথ্য, শিক্ষা, দক্ষতা, স্বাস্থ্য সুরক্ষা, জীবনযাত্রা, আর্থিক সংযুক্তি, ক্ষুদ্র ও গ্রামীন উদ্যোগ, মহিলাদের জন্য সুযোগ, প্রাকৃতিক সম্পদের সংরক্ষণ, পরিছন্ন শক্তির সঠিক বিতরণ—প্রভৃতিতে উন্নয়ন মডেলের পরিবর্তনের অপার সম্ভাবনা রয়েছে| কিন্তু এর জন্য আমাদের ডিজিট্যাল সাক্ষরতায় জোর দিতে হবে| যেভাবে সাধারণ সাক্ষরতায় কাজ করা হয় সেরকম উদ্যোগ নিয়েই এগিয়ে যেতে হবে| প্রযুক্তি যাতে গ্রহনযোগ্য, সাশ্রয়ী ও মূল্য সংযোজন যুক্ত হয় তা সুনিশ্চিত করতে হবে| আমাদের স্বপ্নের ভারত গড়ার অনেক কাজ বাকি| এই অঞ্চলের ভবিষ্যতের শান্তি, স্থায়িত্ব ও সমৃদ্ধিকে রূপ দেওয়ার দায়িত্ব রয়েছে আমাদের| রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান হিসাবে নির্বাচিত হওয়ায় শ্রী হরিবংশ-কে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী অভিনন্দন জানিয়েছেন। সংসদের উচ্চ কক্ষে ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের অব্যবহিত পরেই বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অসুস্থতা কাটিয়ে সুস্থ হয়ে ওঠার পর সংসদের এই কক্ষের নেতা শ্রী অরুণ জেটলি পুনরায় কক্ষে ফিরে আসায় তিনি অত্যন্ত খুশি। আজ বৃহস্পতিবার (০৯ আগস্ট) আমরা ভারতছাড়ো আন্দোলনের বার্ষিকী উদযাপন করছি বলেও প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করিয়ে দেন। তিনি বলেন, হরিবংশজি যেখান থেকে এসেছেন, সেই বালিয়ার সঙ্গে ১৮৫৭ সালে স্বাধীনতা সংগ্রাম থেকে শুরু করে সমগ্র স্বাধীনতার আন্দোলনেরই যোগসূত্র রয়েছে। শ্রী হরিবংশ লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণের আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়েছেন বলেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী চন্দ্রশেখরজী-র সঙ্গেও হরিবংশজীর-র কাজ করার কথা স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, চন্দ্রশেখরজী-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা থাকার সুবাদে হরিবংশজী আগাম জানতে পেরেছিলেন যে, তিনি পদত্যাগ করবেন কিন্তু হরিবংশজী-র নিজস্ব সংবাদপত্র থাকা সত্ত্বেও তিনি সে খবর জানাননি। নৈতিকতা জনসেবার প্রতি তাঁর অঙ্গীকারের দিকটিই এই ঘটনা থেকে প্রতিফলিত হয় বলে প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হরিবংশজী একজন মনযোগী পাঠক এবং বিশিষ্ট লেখক। তিনি বহু বছর সমাজের সেবা করেছেন। রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান পদে নির্বাচনের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের শ্রী বি কে হরিপ্রসাদকেও প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানান। দেশের জ্বালানি ক্ষেত্রে গ্যাসের ব্যবহার, তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানে নতুন বিনিয়োগ, নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে তেল ও গ্যাস সম্পদের আহরণ এবং তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান ক্ষেত্রে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির প্রসার সম্পর্কিত বিভিন্ন দিক এদিনের বৈঠকে খতিয়ে দেখা হয়। চুক্তি/সমঝোতাপত্র/যৌথ ঘোষণাপত্র ভারতের তরফে স্বাক্ষর করেছেন মালদ্বীপের পক্ষ থেকে স্বাক্ষর করেছেন ভিসা ব্যবস্থার সরলীকরণ চুক্তি বিদেশ মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ বিদেশ বিষয়ক মন্ত্রী সাহিদ আব্দুল্লা সাংস্কৃতিক সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতাপত্র সংস্কৃতি মন্ত্রকের সচিব শ্রী অরুণ গোয়েল জৈব বাণিজ্যে বাস্তুতন্ত্রের উন্নতিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য যৌথ ঘোষণাপত্র মালদ্বীপে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শ্রী অখিলেশ মিশ্র অর্থনৈতিক উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ফৈয়াজ ইসমাইল তথ্য প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ক্ষেত্রের সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথ ঘোষণাপত্র অর্থনৈতিক উন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ফৈয়াজ ইসমাইল ঝাড়খণ্ডের বিভিন্ন অঞ্চলে খরা ও জলসঙ্কট পরিস্থিতি সম্পর্কে শনিবার উচ্চ পর্যায়ের এক পর্যালোচনা বৈঠকে নেতৃত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্য বিপর্যয় ত্রাণ তহবিল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে ঝাড়খণ্ডকে দেওয়া হয় ২৭৩ কোটি টাকা। এছাড়াও, ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে এই তহবিলের আওতায় প্রথম কিস্তিবাবদ রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে ১৪৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। রাজ্য বিপর্যয় ত্রাণ তহবিলের আওতায় ঝাড়খণ্ডের ১২ লক্ষ কৃষিজীবী মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে মোট ৩৭৬ কোটি টাকা। এছাড়াও, মেটানো হয়েছে ৫৩ কোটি টাকার বিমা সংক্রান্ত দাবি-দাওয়াও। রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তের জলাশয়ে মৎস্যচাষের কাজেও উৎসাহ দিচ্ছে ঝাড়খণ্ড সরকার। তিনি বলেন, মাটি পরীক্ষার কাজটিকে এক বিশেষ দক্ষতা হিসেবে উৎসাহিত করে তোলা দরকার।এই কাজে গবেষণাগার তৈরির জন্য ‘মুদ্রা’র মাধ্যমে ঋণ সহায়তা প্রসারেরও প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। শুধু তাই নয়, তথ্যপ্রযুক্তির সাহায্যে বিভিন্ন অঞ্চলে অবস্থিত জলাশয়গুলিরও অনুসন্ধান করা যেতে পারে। বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন, টেলি-বিপণন, বহুস্তরীয় বিপণন, ই-বাণিজ্য সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন ধরণের চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় গ্রাহক সুরক্ষা ও বৈধ পরিমাপন ক্ষেত্রে এই মউটি এক স্থায়ী ও মজবুত ব্যবস্থা প্রদান করবে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক মান অনুসরণ করা ও তা বজায় রাখা সম্ভব হবে যার ফলে, নতুন ধরণের চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা আরও সহজ হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে চিরাচরিত ওষুধ ব্যবস্থা ও হোমিওপ্যাথি ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য ভারত ও কিউবার মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারকটি কার্যপরবর্তী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট মিশেলের মতো একজন বিশেষ বন্ধুকে আমাদের দেশে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। এ বছর মার্চে প্রেসিডেন্ট মিশেল আমাকে যে অতুলনীয় আতিথেয়তা দেখিয়েছেন তার উপযুক্ত সম্মান দিতে পারলে আমি খুশি হবো। তিনি এক গভীর দূরদৃষ্টি নিয়ে তাঁর দেশকে নেতৃত্ব দিচ্ছেন। জলবায়ু পরিবর্তনের ঘটনায় বিশ্বের গভীর উদ্বেগের এক বিশেষ অংশীদার তিনিও, বিশেষত, ছোট ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলির জন্য। সেসেলস্ – এ আমি যে কথা বলেছিলাম তারই আবার পুনরাবৃত্তি করছি : কোনও দেশের আয়তন যে তার সাফল্যের পথে বাধা হতে পারে না তা আপনার দেশ প্রমাণ করেছে। আমাদের সম্পর্কের প্রসার ও অগ্রগতির ক্ষেত্রেও প্রেসিডেন্ট মিশেলের যথেষ্ট ভূমিকা রয়েছে। প্রেসিডেন্ট মিশেলের বর্তমান সফর আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক রক্ষার ক্ষেত্রে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে নৌ-নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে আমাদের সহযোগিতা যথেষ্ট নিবিড়। নজরদারি ক্ষমতাকে আরও মজবুত করে তুলতে আমরা পরস্পরকে বিমান, নৌ-তরী এবং উপকূল রক্ষী রাডার – এর যোগান দিয়েছি। জল সীমার ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতা ক্রম প্রসারমান এবং তা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। আমি ইতিমধ্যেই জানিয়েছি যে, ভারত সেসেলস্-কে আরেকটি ইন্টারসেপ্টার উপকূল রক্ষী নৌ-তরী উপহার দেবে। গত মার্চ মাসে সেসেলস্-কে একটি দ্বিতীয় ডোর্নিয়ার বিমান উপহার দেওয়ার কথা আমি ঘোষণা করেছিলাম। আমি আনন্দিত যে, এ সম্পর্কিত প্রক্রিয়া আমরা দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করেছি এবং আজই এ ব্যাপারে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রেসিডেন্ট এবং আমি দু’জনেই মহাসাগর তথা নীল অর্থনীতির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করি। সেসেলস্ – এর অ্যাজাম্পশন আইল্যান্ডে পরিকাঠামো উন্নয়নের প্রস্তুতিও আমরা শুরু করে দিয়েছি। যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নেও মার্চ মাসে আমরা কথাবার্তা বলেছি। আজকের বিমান পরিষেবা সম্পর্কিত চুক্তিটি দু’দেশের মধ্যে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও সহজতর করে তুলবে। জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টি সমগ্র বিশ্বের কাছে এক বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। সেসেলস্ – এর মতো দ্বীপ রাষ্ট্রগুলির ক্ষেত্রে তা ভয়ঙ্কর উদ্বেগেরও কারণ। ভারতের পক্ষেও তা বিশেষ উদ্বেগ ও আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, যেহেতু আমাদের রয়েছে ৭ হাজার ৫০০ কিলোমিটার বরাবর উপকূল রেখা এবং প্রায় ১ হাজার ৩০০টি দ্বীপ। উন্নয়নের ধারাকে ভবিষ্যতে অব্যাহত রাখতে আমাদের দুটি দেশেরই রয়েছে উচ্চাকাঙ্খামূলক জাতীয় পরিকল্পনা। এ বছরের শেষের দিকে প্যারিসে অনুষ্ঠেয় COP 21- এ জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে আলোচনায় আমরা উভয়েই একটি সুসংহত ও সুষম প্রস্তাব পেশের জন্য একযোগে কাজ করে চলেছি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৭০তম বার্ষিকীতে নিরাপত্তা পরিষদ সহ এই প্রতিষ্ঠানটির সংস্কারের লক্ষ্যে আমরা দুটি দেশই আমাদের অভিপ্রায়ের কথা ব্যক্ত করেছি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সম্প্রসারিত নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের আবেদনকে সেসেলস্ সমর্থন জানানোয় আমরা আনন্দিত। আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির মূল কেন্দ্রে এই বিশেষ ও অসাধারণ সম্পর্ক সব সময়েই কাজ করে যাবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, এ বছর আমাদের সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে নতুন মাইলফলক স্থাপন করা হল তা আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বকে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করবে। আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার (৯ ফেব্রুয়ারি) দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সৌন্দর্যের প্রশংসা করেছেন এবং যাঁরা ঐ অঞ্চল সফর করেছেন, তাঁদের তোলা ঐ অঞ্চলের ছবি #ম্যাগনিফিসেন্ট নর্থ-ইস্ট শিরোনামে পোস্ট করার অনুরোধ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ছবিগুলিও শেয়ার করবেন বলে জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী আজ উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বেশ কয়েকটি ছবি শেয়ার করেছেন। গতকাল তিনি #ম্যাগনিফিসেন্ট নর্থ-ইস্ট শিরোনামে আপনাদের সকলকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ছবি শেয়ার করার অনুরোধ জানিয়েছেন। আমি বেশ কয়েকটি ছবি আমার পেজের স্টোরিতে শেয়ার করেছি। প্রধানমন্ত্রী স্টার্ট আপ কানেক্ট অনুষ্ঠানেও ভাষণ দেন, যা মূলত ভারতীয়দের উদ্ভাবনার প্রদর্শন করার মঞ্চ| তিনি ভারতের স্টার্ট আপ লক্ষ্য নিয়ে বলেন : স্বাক্ষরিত হয়েছে| ভারতীয়দের উদ্দেশ্যে ভাষণ প্রধানমন্ত্রী এস.এ.পি. কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে দু মিনিট নীরবতা পালন করে এবং একটি শোক প্রস্তাব গ্রহণ করে। শোক প্রস্তাবের বিষয় নিম্নরূপ – নাগাপাট্টিনাম জেলার থিরুক্কুভালাই গ্রামে ১৯২৪ সালে ৩ জুন তিনি জন্মগ্রহণ করেন। তামিলনাড়ুর রাজনীতিতে সুদীর্ঘ কর্মজীবনে তিনি সার্বজনিক ও রাজনৈতিক ক্ষেত্রে বহু গুরুত্বপূর্ণ পদে কাজ করেছেন। তিনি পাঁচ বার তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেছেন। রাজনৈতিক জীবনের পাশাপাশি, তিনি তামিল চলচ্চিত্রের জনপ্রিয় চিত্রনাট্যকার ছিলেন। দ্রাবিড় আন্দোলনের আদর্শগুলি প্রচারের জন্য তিনি চলচ্চিত্রকে হাতিয়ার হিসাবে ব্যবহার করেন। ডঃ করুণানিধি তাঁর লেখনীগুণ ও সুবক্তা হিসাবেও জনপ্রিয় ছিলেন। তাঁর প্রয়াণে তামিলনাড়ুর মানুষ একজন জনপ্রিয় নেতাকে হারাল। ভারতের সংবিধান রচনার সঙ্গে যাঁরা যুক্ত ছিলেন, তাঁদের সকলের উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে, এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমাদের সংবিধান যাঁরা রচনা করেছিলেন, সেই সমস্ত মহান ব্যক্তিত্বকে আমি শ্রদ্ধা জানাই। প্রেসিডেন্টরহমন এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে আমি ভারতে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। তাজিকিস্তান হ’লআমাদের এক মূল্যবান বন্ধুরাষ্ট্র এবং এশিয়ায় এক কৌশলগত অংশীদার। প্রেসিডেন্ট রহমননিজেও ভারত সম্পর্কে বিশেষভাবে অবগত। তাই, আরও একবার তাঁকে এখানে পেয়ে আমরা সত্যিইবিশেষভাবে আনন্দিত। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে জোরদার করে তোলার ক্ষেত্রে তাঁরনেতৃত্ব ও অবদানের জন্য আমরা অর্থাৎ ভারতবাসীরা গভীরভাবে তাঁর গুণমুগ্ধ। আমাদেরকৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কের মূল ভিত্তি হ’ল আঞ্চলিক নিরাপত্তা ও বিকাশেরক্ষেত্রে পারস্পরিক শ্রদ্ধা, আস্থা এবং মিলিত আগ্রহ। আজ কিছুক্ষণআগে প্রেসিডেন্ট রহমন-এর সঙ্গে আমার সফল আলোচনা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে আমাদের সহযোগিতামূলক কর্মপ্রচেষ্টার একটিগুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হ’ল সন্ত্রাসের মোকাবিলা। মধ্য এশিয়া অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদ,উগ্রবাদ এবং চরমপন্থার বিরুদ্ধে একটি অন্যতম মূল শক্তি হিসেবে তাজিকিস্তানেরভূমিকার আমরা প্রশংসা করি। পারস্পরিক সহমতের ভিত্তিতে যে অগ্রধিকারপ্রাপ্তক্ষেত্রগুলি আমরা চিহ্নিত করেছি, সেখানে আমাদের কর্মপ্রচেষ্টাকে আরও শক্তিশালী করেতোলার সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা। আমরা এই কাজকরে যাব বিভিন্ন পর্যায়ে :- সাংহাইসহযোগিতা সংগঠনের সদস্যপদে ভারতের অন্তর্ভূক্তি তাজিকিস্তানের সঙ্গে আঞ্চলিকনিরপত্তা এবং সন্ত্রাস বিরোধী কর্মপ্রচেষ্টাকে জোরদার করে তোলার ক্ষেত্রে এক সফলমঞ্চ হয়ে উঠতে পারে। এই অঞ্চলের উন্নয়ন সম্পর্কে প্রেসিডেন্ট রহমন এবং আমি উভয়েরমধ্যেই মতবিনিময় হয়েছে। আমরা দু’জনেই এই মর্মে সহমত হয়েছি যে, আফগানিস্তানেরশান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের পক্ষে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ।আফগানিস্তানের জনসাধারণের প্রতি ভারত ও তাজিকিস্তানের সমর্থন রয়েছে অটুট। একসমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ জাতি গঠনে তাদের আশা-আকাঙ্খার সমর্থনেও আমরা এই দুটি রাষ্ট্ররয়েছি তাদের পাশেই। অর্থনৈতিককর্মপ্রচেষ্টা, বিশেষত বাণিজ্য ও বিনিয়োগের আদান-প্রদানের সুযোগ ও মাত্রা বৃদ্ধিরপ্রশ্নেও সম্মত হয়েছি আমরা। বর্তমানে বন্দর ও পরিবহণ সংক্রান্ত যে পরিকাঠামো রয়েছে, তার প্রসারঘটিয়ে রেল ও সড়কপথে আফগানিস্তান, তাজিকিস্তান এবং মধ্য এশিয়ার সঙ্গে এক নেটওয়ার্কগড়ে তোলার উদ্যোগকে ভারত সমর্থন জানিয়েছে। এই প্রসঙ্গে ইরানে চাবাহার বন্দরের মধ্যদিয়ে বাণিজ্য ও সংযোগ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে যাব আমরা। তাজিকিস্তান সহঅন্যান্য সদস্য রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ সংক্রান্ত এক আন্তর্জাতিককরিডর গড়ে তোলার সঙ্গেও যুক্ত রয়েছে ভারত। আশগাবাদ চুক্তির আওতায় আমাদের যেপরিকল্পনা রয়েছে, তা তাজিকিস্তান ও মধ্য এশিয়ার সঙ্গে আমাদের সংযোগের প্রসারেবিশেষভাবে সাহায্য করবে। ভারত ও তাজিকিস্তানের কূটনৈতিক সম্পর্কের ২৫তম বার্ষিকী আমরা উদযাপন করতেচলেছি আগামী বছরটিতে। প্রেসিডেন্ট রহমন-এর এই সফরকালে তাঁর সঙ্গে মিলিতভাবে এইদুটি দেশের মধ্যে যে ব্যাপক ও সুদূরপ্রসারী কার্যসূচি আমরা স্থির করা হয়েছে, তাতেআমি বিশেষভাবে উৎসাহিত। আজ সম্পাদিত বিভিন্ন চুক্তি এবং আমাদের মিলিত আলোচনা ভারতও তাজিকিস্তানের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্যবহারিক সহযোগিতার বিষয়টিকে আরও জোরদার করেতুলবে বলে আমি বিশেষভাবে আশাবাদী। গুজরাটে২০০১-এর ভূমিকম্প পরবর্তী পর্যায়ে পুনর্গঠন ও পুনর্নিমাণ প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্তসরকারি আধিকারিকদের অভিজ্ঞতার কথাও প্রসঙ্গত স্মরণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীবলেন, নিজেদের কাজকর্মকে শুধুমাত্র নিছক কর্তব্য বলে মনে করলেই আধিকারিকদের চলবেনা, বরং দেশে প্রশাসনিক এবং পরিচালনগত ইতিবাচক রূপান্তর প্রচেষ্টার একটি বিশেষসুযোগ বলেই তা গ্রহণ করতে হবে। সরকারি কাজকর্মের প্রক্রিয়াকে আরও সরল করে তুলতেপ্রযুক্তি ব্যবহারের জন্য তাঁদের আগ্রহী হয়ে ওঠারও পরামর্শ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে দেশের সমস্ত আন্তর্জাতিক আর্থিক পরিষেবা কেন্দ্রগুলির নিয়ন্ত্রণে একটি অভিন্ন কর্তৃপক্ষ গঠনের লক্ষ্যে একটি বিলে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে এই ধরণের আইএফএসসি-গুলিকে নিয়ন্ত্রণের জন্য রিজার্ভ ব্যাঙ্ক, সেবি এবং আইআরডিএআই-এর মতো একাধিক কর্তৃপক্ষ রয়েছে। অনেকে ভাবেন, এই জীবনে যা আছে শুধু তাই আছে, আগামীকাল কেই বা দেখেছেন!অনেকে আবার মুক্তির উপায় প্রশস্ত করবার চেষ্টা করেন! কিন্তু যোগীজির জীবনেরযাত্রাপথের বর্ণনায় মুক্তির যাত্রাপথ নয়, অন্তর্যাত্রার আলোচনা রয়েছে। কিন্তু প্রত্যেককে ক্রিয়াযোগের পথেপ্রেরণা যোগায়। যাঁরা তাঁর আত্মকথা পড়েছেন, তাঁরাও সেইপবিত্র ধারায় স্নান করেছেন। যোগীজি শরীর ত্যাগ করার সময় পর্যন্ত কর্মরত ছিলেন এবংনিজের পদে আসীন ছিলেন। আমেরিকায় ভারতের রাষ্ট্রদূত সম্মাননা উৎসবে তিনি ভাষণদিচ্ছিলেন। যোগীজি তাঁর লেখা একটি কবিতায় একথা খুবসুন্দরভাবে লিখেছেন। আমরা যেমন বলি না,‘কর্তা আর কর্ম’ এক হয়ে গেলে সিদ্ধি সহজ হয়। কর্তাকে ক্রিয়া করতে হয় না, আর কর্মকেকর্তার জন্য অপেক্ষা করতে হয় না! এইঅবস্থার বর্ণনা ‘সমাধি’ কবিতায় যোগীজি খুব সুন্দরভাবে লিখেছেন। হাত অন্যপাশে ছড়ালে বলে নাযে, থামো আমাকে বইতে দাও! যোগীজির একটিবড় অবদান হ’ল তিনি এমন একটি ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন যা বন্ধনহীন। যেমন কোনও সংবিধান নাথাকলেও পরিবার যেন চলতে পারে তেমনই সহজ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। তাঁর পরিবার চলতেথাকে তেমনই সহজ ব্যবস্থা গড়ে তুলেছেন। তাঁর অবর্তমানেও একইভাবে কাজ করে চলেছেআত্মিক আনন্দে এগিয়ে চলেছে। আমার মতে, একটি অত্যন্ত বড় অবদান। সেজন্য বিশ্ব ভারতকে জনসংখ্যার নিরিখে বিচার করে, জিডিপি’রনিরিখে, কর্মসংস্থান – বেকারত্বের নিরিখে বিচার করে। কিন্তু বিশ্ব ভারতের যে মানককেকখনও জানে না, চেনে না, ভারতের পরিচয়ের একটি ভিন্ন মানক রয়েছে, সেই দাঁড়িপাল্লাইভারতের শক্তি, তা হল – ভারতের আধ্যাত্ম্য। দেশের দুর্ভাগ্য যে কিছু মানুষ এইআধ্যাত্ম্যকে ধর্মের সঙ্গে গুলিয়ে ফেলেন। ধর্ম, সম্প্রদায় আর আধ্যাত্ম্য আলাদাবিষয়। আমাদের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামজি বার বার বলেছেন, ভারতেরআধ্যাত্মিকরণই তার সামর্থ্য আর এই প্রক্রিয়া নিরন্তর জারি থাকা চাই। আমাদেরমুনি-ঋষিরা এই আধ্যাত্মকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়ার কাজ করেছেন। আমার মতে,এক্ষেত্রে যোগাভ্যাস এক সরল প্রবেশ দ্বার। বিশ্ববাসীকে তাঁরা ‘আত্মবৎ সর্বভূতেষু’বোঝানোর চেষ্টা করেছেন। একদিকে যেখানে খাও, পান কর আর আনন্দে থাকো-এই আলোচনা জারিথাকে সেখানে ‘তেন ত্যক্তেন ভূঞ্জিতা’ কতটা গ্রহণযোগ্য হবে? এভাবেই আমাদের আধ্যাত্মিক যাত্রার প্রবেশদ্বার সূচিত হতে পারে যোগাভ্যাসের মাধ্যমে। কেউ যেন একে অন্তিম লক্ষ্য না ভেবেবসেন। এত ডলার দিলে অমুক সমাধির আনন্দ উপভোগ করাযাবে …… কেউ কেউ এটাকেই অন্তিম লক্ষ্য স্থির করে নিয়েছেন। যোগাভ্যাসঅন্তিম লক্ষ্য নয়, অন্তিমের পথে প্রথম প্রবেশদ্বার মাত্র। পাহাড়ে গাড়ি চড়াতে হলেধাক্কা লাগাতে হয়। গাড়ি থেমে গেলে, ধাক্কা লাগাতে হয়, কিন্তু একবার চালু হয়ে গেলেনিজস্ব গতিতে চলতে শুরু করে। যোগাভ্যাসও তেমনই প্রবেশমুখ যা একবার গতিপ্রাপ্ত হলে চলতেই থাকবে। এই আধ্যাত্মিক যাত্রাকে অবিচল রাখার রাখার জন্য যাঁরানিরন্তর কাজ করে চলেছেন, সে সকল নাগরিকদের শ্রদ্ধা জানিয়ে আমার বক্তব্যে ইতি টানছি।ধন্যবাদ। বৃহস্পতিবার রাজধানীর প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে নীতি আয়োগের উদ্যোগে “পরিবর্তনের দিশারী” অনুষ্ঠানে তরুণ শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে আলোচনা ও মত বিনিময়ে মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এদিন যাঁরা উপস্হাপনার সঙ্গে যুক্ত ছিলেন তাঁদেরও কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন দপ্তর ও মন্ত্রকের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করে যাওয়ার সুযোগ দেওয়া হবে বলে তিনি প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করেন। পদ্ম সম্মান ও পুরস্কারের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে সমাজের অন্যান্য ক্ষেত্রে যাঁরা উল্লেখযোগ্য সাফল্যের নজীর সৃষ্টি করেছেন কিংবা জাতীয় জীবনে কোনও না কোনওভাবে অবদান রেখেছেন তাঁদেরও কিভাবে সম্মানিত করা যায় সে সম্পর্কেও আমাদের চিন্তাভবনা করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে কেন্দ্রীয় সরকারের পদস্হ আধিকারিকরা সাধারণ মানুষের বিকাশ ও কল্যাণে কোন্ কোন্ ব্যবস্হা গ্রহণ করা যেতে পারে তা খুঁজে বের করার কাজে খুবই আগ্রহী। নিজেদের গোষ্ঠীগুলির মধ্যে তাঁদের নিজস্ব চিন্তাভাবনা ছড়িয়ে দেওয়ার জন্য শিল্পোদ্যোগীদের এদিন উৎসাহদান করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন যে এই কাজে সফল হলে সুপ্রশাসন ও সুপরিচালনের স্বার্থে তাঁরা যথেষ্ট অবদানের নজির সৃষ্টি করবেন। দেশে বহু ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র পরিবর্তন যে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই সম্ভব করে তুলেছে সেকথার উল্লেখ করে তিনি বলেন যে এই ধরনের পদক্ষেপগুলির সুদূরপ্রসারী ফলাফলও ইতিমধ্যে লক্ষ্য করা গেছে। স্বপ্রত্যায়িত নথিপত্র পেশ করার বিষয়টিতে অনুমোদন দানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের ওপর আরও বেশি করে আস্হা ও বিশ্বাস প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে। এমনকি গ্রুপ-সি এবং গ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার গ্রহণের প্রথাও তুলে দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে বর্তমানে কোনও বিষয়ে কোনরকমভাবে জ্ঞান ও তথ্যের যাতে ঘাটতি না থাকে সেজন্য একটি করে “অ্যাপ”-এরও সূচনা হয়েছে। কারণ তিনি মনে করেন যে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের সমন্বয় সরকারি প্রশাসন ও পরিচালনের ক্ষেত্রে রূপান্তরমুখী পরিবর্তন সম্ভব করে তুলতে পারে। বাস্তব অর্থনীতিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে প্রয়োজন বিকেন্দ্রীকৃত কাঠামোশক্তি। সরকারের রূপান্তর প্রচেষ্টায় ‘স্টার্ট-আপে’-এর ভূমিকার কথাও এদিন উল্লেখ করেন তিনি। সরকারের সমাজ কল্যাণমূলক কর্মসূচিগুলি নিজস্ব প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের স্বার্থেও রূপায়ণের জন্য শিল্পোদ্যোগীদের উৎসাহ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর মতে এক নতুন ভারত গঠন সম্ভব দেশের কোটি কোটি সাধারণ নাগরিকের ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টার মাধ্যমে। এই আন্দোলনে সামিল হওয়ার জন্য শিল্পোদ্যোগীদের কাছে আর্জি জানান তিনি। কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী অরবিন্দ পানাগারিয়া এবং কেন্দ্রীয় সরকারি পদস্হ আধিকারিকরা উপস্হিত ছিলেন এদিনের অনুষ্ঠানে। প্রস্তাবিত এই কেন্দ্রটি গঠিত হলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সবক’টি সদস্য রাষ্ট্রের মধ্যে সহযোগিতা ও সমঝোতার বাতাবরণ আরও প্রসার লাভ করবে। দক্ষিণ এশিয়ার সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে রয়েছে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল এবং শ্রীলঙ্কা। এর বাইরে অন্যান্য সদস্য দেশগুলিও পরবর্তী পর্যায়ে যোগ দিতে পারে এই কেন্দ্রটিতে। ভারতে রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে দক্ষতা বৃদ্ধির বিষয়টিও বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে কেন্দ্রটি স্থাপিত হলে। এইঅংশীদারিত্বের সুবাদে নতুন প্রযুক্তিগত বিকাশের সম্ভাবনা আহরণের সুযোগ লাভ করবেভারত। এই সমস্ত প্রযুক্তির প্রয়োজনে স্থানীয়ভাবে যন্ত্রাংশ নির্মাণ ও উৎপাদনেরকাজটিও বিশেষ উৎসাহিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলশ্রুতিতেবিশেষ প্রসার ঘটবে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির যা কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিরক্ষেত্রেও এক বিশেষ অবদানের নজির সৃষ্টি করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আইনের অনুশাসন মেনে চলা সকল নাগরিকের পক্ষেই বাধ্যতামূলক। অনুষ্ঠানে উপস্থিত আধিকারিকদের অনেকেই ডিজিটাল পদ্ধতি, স্বেচ্ছায় কর মিটিয়ে দেওয়া, করদাতাদের জন্য সুযোগ-সুবিধা, করের পরিধি বাড়ানো, কর প্রশাসনের ডিজিটাল তথা ব্যবহারিক পরিকাঠামোকে অত্যাধুনিক করে তোলা সহ বেশ কয়েকটি বিষয়ে তাঁদের মতামত পেশ করেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। কর ব্যবস্থার ওপর আস্থা ও বিশ্বাসের মানসিকতা গড়ে তুলতে কর প্রশাসকদের উদ্দেশে আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার ভারত সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রক ওদপ্তরে কর্মরত ৭০ জন অতিরিক্ত সচিব এবং যুগ্ম সচিবদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হয়েবিভিন্ন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করেছেন। এই বৈঠকটি ছিল এই ধরনের প্রস্তাবিত পাঁচটিবৈঠকের মধ্যে প্রথম। এই আলোচনার সময় ডিজিটাল এবং স্মার্ট প্রশাসন, প্রশাসনিক কর্মপদ্ধতি ওউত্তরদায়িতা, স্বচ্ছতা, কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা, দক্ষতা উন্নয়ন, স্বচ্ছ ভারত,গ্রাহকদের অধিকার, পরিবেশ সুরক্ষা এবং ২০২২ সালের মধ্যে নতুন ভারত গড়ে তোলারলক্ষ্য বিষয়ে তাঁদের কাজের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের নাগরিকদের কল্যাণ ও সন্তুষ্টির জন্য উন্নয়ন ওসুপ্রশাসনের সংযুক্ত উদ্যোগ প্রয়োজন। তিনি বলেন, আধিকারিকদের জন্য সুপ্রশাসনকেঅগ্রাধিকার দেওয়া উচিৎ। সরকারের সবকটি শাখায় সবচেয়ে ভালো কাজের জন্য একযোগে এবংসমন্বয়ের মাধ্যমে কাজ করার ওপর তিনি জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিদ্ধান্তনেওয়ার সময় আধিকারিকদের দরিদ্র ও সাধারণ নাগরিকদের কথা মাথায় রাখাতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের সাধারণনাগরিকদের মাধ্যে কর্মদক্ষতার এক শক্তিশালী স্রোত রয়েছে। অত্যন্ত দরিদ্র পরিবারথেকে উঠে আসা যুবকেরা সীমিত আর্থিক সামর্থ্যকে কাজে লাগিয়ে প্রতিযোগিতামূলকপরীক্ষা এবং খেলাধূলার ক্ষেত্রে দুর্দান্ত ভালো ফল করছে। জাতির উন্নতির জন্য আধিকারিকদের কাছে তাঁদের সর্বশক্তি নিয়োগ করে ভালো কাজকরার সুযোগ এসেছে বলে প্রধানমন্ত্রী বলেন। তিনি গয়ংগচ্ছ ভাব দূর করে সরকারেরবিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সুদক্ষ অভ্যন্তরীণ যোগাযোগের ওপর জোর দেন। সিদ্ধান্তগ্রহণের ক্ষেত্রে দ্রুততা এবং দক্ষতার কথাও তিনি বলেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারসদ্বিচ্ছার সঙ্গে গৃহীত সিদ্ধান্তকে সর্বদাই উৎসাহিত করবে। দিল্লি উচ্চ আদালত প্রতিষ্ঠার ৫০তম বর্ষ উদযাপনের অঙ্গ হিসেবে আয়োজিত একঅনুষ্ঠানে আজ যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী । গত পাঁচ দশকের সময়কালে এই উচ্চ আদালতের সঙ্গে যুক্তবিশিষ্ট ব্যক্তিদের অবদানের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন তিনি। এই প্রসঙ্গেবক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সংবিধান অনুসরণ করে সংশ্লিষ্টসকলেরই উচিৎ তাঁদের নিজ নিজ দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করা। সর্বভারতীয় অসামরিক সেবা অর্থাৎ সিভিল সার্ভিস-এর জন্ম দেওয়ার মূলেওছিলেন তাঁর অবদান ও অনুপ্রেরণা। বিকল্প উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তির বিষয়টিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য আইনিপেশার সঙ্গে যুক্ত সকলেরই ভুয়সী প্রশংসা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সমঝোতা / চুক্তির বিবরণ দ্বৈত কর পরিহার এবং আয়কর ফাঁকির প্রতিরোধ সংক্রান্ত চুক্তি বিদেশ মন্ত্রী শ্রীমতি সুষমা স্বরাজ অর্থনৈতিক এবং আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রী ডঃ মাসুদ কার্বাসিয়ান কূটনৈতিক পাসপোর্টধারীদের জন্য ভিসায় ছাড় সংক্রান্ত সমঝোতা বিদেশ সংক্রান্ত দপ্তরের মন্ত্রী ডঃ মহম্মদ জাভেদ জারিফ প্রত্যর্পণ চুক্তি অনুমোদনের জন্য নথিপত্র বিনিময় বিষয়ক ভারতের পোর্টস গ্লোবাল ইন্ডিয়ান লিমিটেড এবং ইরানের পোর্ট অ্যান্ড ম্যারিটাইম অর্গানাইজেশনের মধ্যে অন্তর্বতী সময়ের জন্য চাবাহার বন্দরের প্রথম পর্যায়ে শাহীদ বেহেস্তি বন্দরের লিজ সংক্রান্ত চুক্তি বহু উদ্দেশ্যসাধক এবং কন্টেনার টার্মিনালের একটি অংশের কাজ ও চালু ব্যবস্হাগুলিকে দেড় বছরের জন্য (১৮ মাস)লিজ দেওয়া শ্রী নীতিন গড়করি, জাহাজ মন্ত্রী সড়ক এবং নগরোন্নয়ন দপ্তরের মন্ত্রী ডঃ আব্বাস আখুন্ডি চিরাচরিত চিকিৎসা ব্যবস্হার ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা পারস্পরিক স্বার্ষ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক লেনদেনের ত্রুটিবিচ্যুতিগুলি দুর করতে বিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী স্হাপন বিষয়ে সমঝোতা অর্থনৈতিক এবং আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত উপমন্ত্রী ডঃ মহম্মদ খাজায়েই কৃষি এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা কৃষি এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত কর্মসূচি, তথ্য ও কর্মী বিনিময়, বিভিন্ন ধরনের শস্য, উদ্যানজাত কৃষিপণ্য, কৃষি যন্ত্রপাতি এবং গাছ পৃথকীকরণের ব্যবস্হা, মৃত্তিকা সুরক্ষা, বীজ প্রযুক্তি, পোল্ট্রি ও দোহ উন্নয়ন এস কে পট্টনায়ক, কৃষি সচিব স্বাস্হ্য এবং ওষুধপত্রের ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতা ডাক যোগাযোগ ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরপৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় বৈঠকে আজ যেসব সূচনা-উত্তর অনুমোদন দেওয়া হয়েছেতার মধ্যে রয়েছে : ২) কেন্দ্রীয় বাজেটের মাধ্যমে নাবার্ডকে অতিরিক্তি মূলধন হিসেবে ২ হাজার কোটিটাকা প্রদানের সিদ্ধান্ত। শুরুতে ২০১৬-১৭-র আর্থিক বছরে অতিরিক্ত ৫০০ কোটি টাকারমূলধন দেওয়া যেতে পারে। ৩) কৃষি, সমবায় ও কৃষক উন্নয়ন প্রকল্প অনুসারে সুদের ক্ষেত্রে ১.৮ শতাংশ এবংনাবার্ডের প্রশাসনিক ব্যয় হিসেবে ০.২ শতাংশ প্রদান করা হবে। তবে সুদের হারে ছাড়েরমাত্রাটি নির্ভর করবে নাবার্ড কি হারে তহবিল সংগ্রহ করে তার ওপর। ২০১৪-র আগেএকটি এলইডি বাল্বের দাম যেখানে ৩৫০ টাকা ছিল, তা এখন কমে ৪০-৫০ টাকা হয়েছে । সেইবাল্বগুলি বাড়িতে ব্যবহারের ফলে প্রতি বছর দেশবাসীর বিদ্যুতের বিলে আনুমানিক ১৫হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে । আজ প্রত্যেকভারতীয় নতুন ভারতের স্বপ্ন সাকার করার জন্য কাজ করছে । দেশেরভিন্ন ভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত বিভিন্ন পেশার সঙ্গে জড়িত ভারতীয়দের একটি সমৃদ্ধচিত্র আমার চোখের সামনে নির্মিত হতে দেখছি । আমি প্রায়দশ বছর পর ওমানে এসেছি । আগে যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে আফ্রিকাসফরের পথে আমি সালালাহ্‌হয়ে গিয়েছি । ভারত এবংওমানের মধ্যে সম্পর্ক শত সহস্র বছরের পুরনো । ওমানেরসঙ্গে ভারতের ঐতিহাসিক সম্পর্কও আজ একটি নতুন মোড়ের মুখে । এই আত্মীয়ভাবাপন্ন অভিব্যক্তির জন্য আমি তাঁর প্রতি অনেক অনেক কৃতজ্ঞ । ‘ ন্যূনতম সরকারি হস্তক্ষেপ, অধিকতম পরিষেবা ’ – এই মন্ত্র নিয়ে আমরা দেশের সাধারণ মানুষের জীবনকে সহজতর করে তোলার জন্য নানাকাজ করছি । প্রক্রিয়াসমূহকেসরল করে তোলা, অনাবশ্যক আইনগুলিকে বাতিল করা, সরকারি দপ্তরগুলিতে ৪০-৫০ পৃষ্ঠারফর্মগুলিকে সংক্ষেপিত করে ৪-৫ পৃষ্ঠার করে তোলা, আর, সেগুলিও অনলাইনে ভরারব্যবস্থা করা, মানুষের অভিযোগগুলিকে আন্তরিকভাবে শোনা, আর, সেগুলি সমাধানের জন্যকাজ করা আমাদের সরকারের সংস্কৃতি করে তুলতে আমরা প্রচেষ্টা চালাচ্ছি । পরিবর্তিতভারতে আজ দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম ব্যক্তিকেও ব্যাঙ্ক থেকে তাড়িয়ে দেওয়া হয় না । আজ ভারতেরকেন্দ্রীয় সরকার গরিব মানুষের জন্য এমন সব বিমা প্রকল্প এনেছে যাতে প্রতিদিন ৯০পয়সা, আর একটি প্রকল্পে মাসে ১ টাকা কিস্তি জমা দিলে তাঁদের জীবন এবং সুরক্ষা বিমাপ্রদান করা হচ্ছে । ইতিমধ্যেই এই বিমা প্রকল্পগুলির মাধ্যমে যাঁরা এই অল্প সময়ের মধ্যেক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন এরকম ২ হাজার কোটি বিমার টাকা সেই সমস্ত গরিব পরিবারের ব্যাঙ্কঅ্যাকাউন্টে জমা হয়েছে । এবারেরবাজেটের দিকে যদি ভালো করে তাকান তাহলে দেখবেন আমরা এমন সব প্রকল্প শুরু করেছি যাগোটা পৃথিবীকে আকৃষ্ট করছে । এটি এমন প্রকল্প যে পরিবারের যে কোনসদস্যের বছরে ৫ লক্ষ টাকা খরচের চিকিৎসা বিনামূল্যে প্রদান করা হবে । একবিংশশতাব্দীর প্রয়োজনের কথা মাথায় রেখে আমরা পরবর্তী প্রজন্মের উপযোগী পরিকাঠামোনির্মাণকে অগ্রাধিকার দিয়েছি । ‘ ভারতমালা ’ প্রকল্পের মাধ্যমে ৫৩ হাজার কিলোমিটার জাতীয় মহাসড়ক নির্মাণের কাজ শুরুকরেছে । দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে রেল নির্মাণের কাজ চলছে । ১১টি বড়শহরে মেট্রো রেল বিস্তারের কাজ শুরু হয়েছে । এভাবে দেশের সমুদ্র তটবর্তী অর্থনীতি আরতার সঙ্গে যুক্ত পরিকাঠামো উন্নয়নের মাধ্যমে আমরা এই ‘ সাগরমালা ’ যোজনাকে এগিয়ে নিয়ে চলেছি । কেন্দ্রীয়সরকার দেশে ১১০টিরও বেশি জলপথ গড়ে তুলছে । এখন ভারতেকোন সিদ্ধান্তকে আর থামিয়ে রাখা যাবে না । লক্ষ্য স্থির করে আমরা প্রতিটি প্রকল্পকেনির্ধারিত সময়ের আগে সম্পূর্ণ করছি । এটা ভারতের পরিবর্তিত কর্মসংস্কৃতিরউদাহরণ । এটাই নতুন ভারতের পথে এগিয়ে যাওয়ার প্রমাণ । ভালোভাবেকাজ করার ইচ্ছা এবং সুস্পষ্ট নীতির মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়া হলে দেশের অর্থ সাশ্রয়হয় । যখন দক্ষভাবে এই কাজ করা হয়, তখন বর্তমান ব্যবস্থাকে ভালোভাবে ব্যবহারকরেই দেশের অর্থ সাশ্রয় হয় । হিমাচল প্রদেশের রাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “ভারতীয় ভারোত্তোলন প্রতিযোগীরা পদক তালিকায় আমাদের অবস্থান আরও উন্নীত করেচলেছেন। ৭৭ কিলোগ্রাম ওজন বিভাগে স্বর্ণপদক জয়ী সতীশ কুমার শিবলিঙ্গম’কে বাহবাজানাই। আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার! আর বাচ্চাদের কৌতূহল, যুব প্রজন্মের মহান কিছু করার আকাঙ্ক্ষা, বড়দেরঅনুভবের সারবস্তু এমন নানা কথা আমাদের সামনে আসে। পরামর্শ কিপ্রকারের, অভিযোগ কী কী আছে, মানুষদের অনুভূতি কী রকম ইত্যাদি। মোটের ওপর দেখা যায়যে লোকেদের স্বভাব হল অন্যকে পরামর্শ দেওয়া। ট্রেনে, বাসে যেতে যেতে যদি কারোরকাশি হয়, তো সঙ্গে সঙ্গে অন্যরা বলে এইরকম কর। পরামর্শ দেওয়া, পরামর্শ করা, এখানেআমাদের স্বভাবগত হয়ে গেছে। শুরুর দিকে ‘মন কি বাত’ নিয়ে যখন পরামর্শ আসত, পরামর্শশোনা যেত, পড়া যেত, তখন আমাদের টিমেরও মনে হত যে বহু মানুষের এটাই স্বভাব। কিন্তুযখন মনোযোগ দিয়ে এগুলি দেখার চেষ্টা করলাম, তখন আমি আপ্লুত হয়ে গেলাম। বেশিরভাগক্ষেত্রেই সেইসব মানুষ পরামর্শ পাঠিয়েছেন, আমার কাছ পর্যন্ত পৌঁছনোর চেষ্টাকরেছেন, যাঁরা সত্যি সত্যিই নিজেদের জীবনে কিছু না কিছু করেছেন। তাঁরা নিজেদেরবুদ্ধি, শক্তি, সামর্থ্য ও সুযোগ অনুযায়ী কিছু ভাল কাজ করার চেষ্টা করেছেন। আর যখনএটা আমি বুঝতে পারলাম, তখন আমার মনে হল যে এইসব পরামর্শ তো সামান্য নয়। এইসব এসেছেনিজেদের অনুভবের সার থেকে। আর এটা উল্লেখ করার পর খাদ্য অপচয় কীভাবে বন্ধ করা যায়, তা নিয়ে দেশেরবহু কোণ থেকে বহু মানুষ কতরকম অভিনব চিন্তাভাবনা নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ ও ‘মাই গভ’পোর্টালে পাঠিয়েছিলেন। আমি কখনও ভাবতেই পারিনি যে বর্তমানে আমাদের দেশে বিশেষ করেযুবপ্রজন্ম বহুদিন ধরে এই বিষয়ে কাজ করে চলেছেন। কিছু বছর ধরেই আমি জানতাম যে কিছুসামাজিক সংগঠন এই বিষয়ে কাজ করে চলেছে, কিন্তু, আমার দেশের যুবপ্রজন্মও যে এইব্যাপারে কাজ করে চলেছে, এ আমি অনেক পরে জানতে পারি। লোকেরা রুটি ব্যাঙ্কে নিজেদেরথেকে রুটি জমা করেন, তরকারিপাতি জমা করেন, আর যেসমস্ত অভাবী মানুষ আছেন, তাঁরাসেগুলি সংগ্রহ করেন নিজেদের জন্য। যাঁরা দিচ্ছেন, তাঁদের ভালো লাগে, আর যাঁরানিচ্ছেন তাঁদেরও নিজেদের ছোটো বলে মনে হয় না। সমাজে সহযোগিতার মাধ্যমে কীভাবে কাজহয়, এটা তারই উদাহরণ। আজ এপ্রিল মাসের শেষ দিন। পয়লা মে গুজরাট ও মহারাষ্ট্রঅঙ্গরাজ্য হিসাবে স্বীকৃতি পেয়েছিল। এই উপলক্ষে দুই রাজ্যের মানুষদের আমার তরফথেকে অনেক অনেক শুভকামনা। এইসংকল্পকে কাজে পরিণত করার জন্য পরিকল্পনা নেওয়া উচিত, এবং সমস্ত নাগরিকের এই কাজেসহযোগিতা আরও বাড়ানো উচিত। এই দুটি রাজ্যকে আমার অনেক অনেক শুভকামনা। একটা সময় ছিল, যখন জলবায়ু পরিবর্তন বিদ্ব্যৎসমাজের ভাবনা-চিন্তারবিষয় ছিল, সেমিনারের বিষয় ছিল। কিন্তু আজ, প্রতিদিনের জীবনচর্যায় আমরা আশ্চর্য হই,অনুভব করি বিধির বিধান কীভাবে খেলার সমস্ত নিয়মকানুন বদলে দিয়েছে। আমাদের দেশেমে-জুনে যেরকম গরম হত, তা এবার মার্চ-এপ্রিলে অনুভব করার সময় এসে গেছে। ‘মন কিবাত’-এ যখন আমি লোকেদের পরামর্শ নিচ্ছিলাম, তখন বেশি করে এই গরমে কী করা উচিত সেই পরামর্শচাইছিলাম এবং তা মানুষেরা দিয়েছিলেন। তাঁরা বলেছেন ব্যালকনিতে, ছাদে জল রাখা উচিত। আর আমিদেখেছি যে, পরিবারের ছোটরা এই কাজ খুব ভালভাবে করছে। একবার যদি তারা বুঝে যায় যেএই জল কেন ভরে রাখা উচিত, তাহলে দিনের মধ্যে দশবার তারা পাত্রে জল আছে কি নেই তাদেখতে যায়। আর পাখি এসেছে কিনা তাও দেখতে থাকে। আমার মনে হয় কি – এ এক খেলা চলছে,কিন্তু সত্যি সত্যি বালকদের মনে সমবেদনা জাগানোর এ এক অদ্ভুত উপায়। আপনিও মাঝেমাঝে দেখুন পশু-পক্ষীদের জন্য এই অল্প কিছু ভাবনা এক নতুন আনন্দের অনুভূতি দেয়। আমাদের দেশে তো আমরা পশু-পাখি-প্রকৃতিরসঙ্গে মিলে মিশে জীবন কাটাই, তাদের রঙে রঙ মেলাই, তবুও তাদের সংরক্ষণের জন্য একসামগ্রিক প্রয়াসে আরও জোর দেওয়া উচিত। যখন আমি গুজরাটে মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম, তখন‘দাউদি বোহরা সমাজ’-এর ধর্মগুরু সৈয়দনা সাহেবের একশ বছর পূর্ণ হয়েছিল। তিনি ১০৩বছর পর্যন্ত জীবিত ছিলেন। আর তাঁর একশো বছর উদ্‌যাপনের জন্য বোহরা সমাজ বুরহানিফাউণ্ডেশন-এর মাধ্যমে চড়ুইদের বাঁচানোর জন্য এক বড় অভিযান চালায়। এই অভিযানের শুভসূচনা করার সুযোগ আমার হয়েছিল। প্রায় বাহান্ন হাজার bird feeder বিশ্বের কোণে কোণে তাদের ছড়িয়ে দিয়েছিল। Guinness Book of World Records -এ এই অভিযান জায়গা করে নিয়েছে। কখনও কখনও আমি এতব্যস্ত হয়ে পড়ি যে, খবরের কাগজওয়ালা, দুধওয়ালা, সব্জীওয়ালা, পোস্টম্যান – যাঁরাইআমার ঘরে আসে, গরমের দিনে তাদের আগে একটু জল দেওয়ার কথা আমি ভুলে যাই। যুবক বন্ধুরা, আমি আপনাদের সঙ্গেও কিছু কথা বলতে চাই। আমারকখনও কখনও মনে হয় যে, আমাদের যুবপ্রজন্মের কিছু লোকের comfort zone –এ থেকে জীবন কাটাতে মজা লাগে। তাদের মা-বাবাও তাদের একঘেরাটোপের মধ্যে লালন-পালন করেছেন। কিছু মানুষ চরম প্রতিকূলতার মধ্যে দিয়ে যায়।কিন্তু বেশির ভাগ মানুষ comfortzone –এই জীবন কাটায়।এখন পরীক্ষা শেষ হয়ে গেছে। ছুটিতে মজা করার নানান পরিকল্পনা করা হয়ে গেছে। গরমেরছুটিতে গরম পড়লেও বেশ মজা লাগে। তবে আমি বন্ধু হিসেবে আপনাদের ছুটি কেমনভাবেকাটাবেন, সে বিষয়ে কিছু কথা বলতে চাই। আমার বিশ্বাস কিছু মানুষ অবশ্যই আমার কথা কাজেপরিণত করবেন এবং আমাকে জানাবেনও। নতুন জায়গা, নতুন অভিজ্ঞতা, নতুন দক্ষতা। কখনও কোনো জিনিস টিভিতে দেখা,বা বইতে পড়া বা পরিচিত মানুষের কাছে সে বিষয়ে শোনা আর স্বয়ং তা অনুভব করার মধ্যেআকাশ-পাতাল পার্থক্য হয়ে যায়। পরীক্ষা-নিরীক্ষা সদর্থক হোক, comfortzone থেকে একটু বাইরেবেরোনর মত হোক। আমরা মধ্যবিত্ত পরিবারের, সুখী পরিবারের। কি বন্ধুরা, কখনো কি মনেহয়েছে যে আসন সংরক্ষণ না করে টিকিট নিয়ে ট্রেনের সেকেণ্ড ক্লাস কামরায় চড়ে বসি আরকম করেও ২৪ ঘণ্টা সফর করি। সন্ধেবেলা, নিজের ফুটবলনিয়ে, ভলিবল নিয়ে বা খেলাধূলার অন্যান্য সরঞ্জাম নিয়ে এক নিতান্ত গরীব বস্তিতে চলেযান। ওইসব গরীব বালকদের সঙ্গে নিজে খেলুন, আপনি দেখবেন, আপনার মনে হবে জীবনে খেলারএই আনন্দ আগে কখনও পাননি। সমাজে এরকম জীবনযাপন করা বাচ্চাদের যখন আপনার সঙ্গেখেলার সুযোগ হবে, আপনি কি ভেবেছেন ওই বাচ্চাদের জীবনে কত বড় পরিবর্তন আসবে! আমিবিশ্বাস করি, একবার গেলে বারবার যাওয়ার ইচ্ছা হবে। এই অভিজ্ঞতা আপনাকে অনেক কিছুশেখাবে। অনেক স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এই সেবার কাজ করে যাচ্ছে। সবাই নতুনপ্রযুক্তির মাধ্যমে অন্য কোথাও ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। একসঙ্গে থাকাটাও এক সংস্কার,ঐক্য হল শক্তি। বর্তমান যুগ হল প্রতিযোগিতার। কিন্তু এটাও দেখুন যে, নিজেদের মধ্যে যেমনুষ্যত্ব আছে, তা যেন সঙ্কুচিত না হয়, আমরা মানবিক মূল্য থেকে দূরে যেন চলে নাযাই। দক্ষতার উন্নতির দিকে একটু জোর দেওয়া যেতে পারে। সাঁতার না জানলে সাঁতার শিখুন, ছবি আঁকুন।হতে পারে ভালো ছবি হবে না, কিন্তু কাগজে কিছু তো আঁকার চেষ্টা করতে পারেন। আপনারমধ্যে যে প্রতিভা আছে, সেটা প্রকাশিত হতে থাকবে। কখনো কখনো যেসব কাজকে আমরা ছোটভাবি, কেন মনে হয় না – সেগুলো শিখি। আপনি সাইকেল তো চালাতে পারেন, কিন্তু তিনচাকার সাইকেল অর্থাৎ রিক্সা, যেটা লোকেদের নিয়ে যায়, কখনো চালানোর চেষ্টা করেছেনকি? আপনি দেখুন এসবই নতুন প্রয়োগ, এর দক্ষতা এরকম যেটা আপনাকে আনন্দও দেবে এবংজীবনকে যে একঘেঁয়েমি ছন্দে বেঁধে রেখেছেন, তার থেকে আপনি মুক্তি পাবেন। গতানুগতিকজীবন থেকে বেরিয়ে, কিছু একটা করুন, বন্ধুরা। জীবন গড়ে তোলার এটাই তো সুযোগ। আপনিহয়ত ভাবছেন সব পরীক্ষা ( Exam ) শেষ হয়ে যাক, নতুন career -এ গেলে তখনই শিখব, তখন কিন্তু সুযোগ আসবে না। আবার আপনিঅন্য কোনো ঝামেলাতে জড়িয়ে পড়বেন, তাই আমি আপনাদের বলব, যদি আপনার জাদু শেখার শখথাকে, তো অন্তত তাসের জাদু শিখুন। নিজের বন্ধুদের জাদু দেখাতে থাকুন। কিছু না কিছুএরকম জিনিস যেটা আপনি জানেন না, সেটা জানার চেষ্টা করুন, আপনি নিশ্চয়ই উপকৃত হবেন।আপনার ভেতরের মানবিক গুণগুলো জাগ্রত হবে। উন্নতির অনেক সোপান তৈরি হবে। আমি নিজেরঅভিজ্ঞতা থেকে বলছি, দুনিয়াকে দেখে আমরা যত শিখতে-বুঝতে পারি তার কল্পনাও করতেপারি না। নতুন নতুন স্থান, নতুন নতুন শহর, নতুন নতুন নগর, নতুন নতুন গ্রাম, নতুননতুন এলাকা। কিন্তু যাওয়ার আগে যেখানে যাচ্ছি – ওখানকার রীতি-নীতি, আর সেখানে গিয়েজিজ্ঞাসুর মতো দেখা, বোঝা, লোকেদের মধ্যে চর্চা করা, জিজ্ঞেস করা, এই সব চেষ্টাযদি করা যায়, তবে ওই নতুন জায়গা দেখার আনন্দ আরও বেড়ে যায়। আপনি নিশ্চয়ই চেষ্টাকরবেন, আর ঠিক করে নিন যে ট্র্যাভলিং বেশি করবেন না। একই জায়গায় গিয়েতিনদিন-চারদিন থাকুন। আবার অন্য জায়গায় যান এবং তিনদিন-চারদিন থাকুন। এর থেকে আপনিঅনেক শিখতে পারবেন। আর আমি চাইব যে, আপনিযখন যাচ্ছেন আমাকে ছবি অবশ্যই পাঠাবেন। কোথায় গিয়েছিলেন? আপনি‘হ্যাশ ট্যাগ ইনক্রেডিবল ইণ্ডিয়া’র ব্যবহার করে আপনার অভিজ্ঞতা শেয়ার করুন। বন্ধুগণ, এইবার ভারত সরকারও আপনার জন্য খুব ভালো সুযোগদিয়েছে। নতুন প্রজন্ম নগদ লেনদেন থেকে প্রায় মুক্ত হয়ে যাচ্ছে। এদের ক্যাশের দরকারনেই। এরা ডিজিট্যাল কারেন্সি-তে বিশ্বাস করতে শুরু করে দিয়েছে। আপনি তো এর ব্যবহারকরেন, কিন্তু এই যোজনা থেকে আয়ও করতে পারেন – আপনি চিন্তা করেছেন? ভারত সরকারের একযোজনা আছে। রেফারকরুন আর আয় করুন। সাধারণভাবে আমাদের দেশে ভি.আই.পি কালচারের প্রতি বিতৃষ্ণারয়েছে, কিন্তু এটা যে এত প্রবল – এটা আমি এখনই বুঝতে পারলাম। যখন সরকার ঠিক করেছিলযে বর্তমানে ভারতবর্ষে যত বড় ব্যক্তি হোক না কেন, নিজের গাড়িতে লাল বাতি লাগিয়েচলাফেরা করতে পারবে না। এখন তো লাল বাতি চলে গেছে, এর জন্য কেউ এটা বলতে পারবে না যে মনের মধ্যে যেলাল বাতি ঢুকে আছে, সেটা হয়ত বেড়িয়ে গেছে। আমারকাছে এক ইন্টারেস্টিং ফোন কল এসেছিল। আমি সরকারের রেড বেকন লাইট ব্যানসম্বন্ধে কিছু বলতে চাই। আমি এক লাইন পড়েছিলাম সংবাদপত্রে, যেখানে লেখা ছিল “ Every Indian is a VIP on a road ”। আমাকে ট্র্যাফিক জ্যামে ফাঁসতে হবে না, আর আমাকেকারও জন্য অপেক্ষা করতে হবে না। আমি আপনাকে মন থেকে অনেক ধন্যবাদ দিতে চাই এইসিদ্ধান্তের জন্য। দেশের সব মানুষইগুরুত্বপূর্ণ, সব মানুষেরই মাহাত্ম্য আছে। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি সবসময়েই বলে থাকি যে আমাদেরইতিহাসকে, আমাদের সংস্কৃতিকে, আমাদের ঐতিহ্যকে বারবার স্মরণ করতে হবে। এর থেকেআমরা শক্তি সঞ্চয় করি, প্রেরণা পাই। সমাজে যাদের অচ্ছুৎ বলে মানা হত, তিনি নিজেতাদের আলিঙ্গণ করেছিলেন। আজ থেকে হাজার বছর আগে তিনি তাদের মন্দিরে প্রবেশেরঅধিকার নিয়ে আন্দোলন করেছিলেন এবং সফল হয়েছিলেন। আমরা এতটাই ভাগ্যবান যে, সব যুগেইসমাজের দোষগুলিকেই খণ্ডন করার জন্য কোন-না-কোনো মহাপুরুষ এদেশে জন্ম নিয়েছেন। সন্তরামানুজাচার্যের সহস্রতম জয়ন্তী পালনকালে সামাজিক একতার জন্য সঙ্ঘবদ্ধ প্রয়াসই যেশক্তির উৎস সেই ভাবনাটিকে তুলে ধরতে আমরা তাঁর কাছ থেকে প্রেরণা নিতে পারি। ভারতসরকার আগামীকাল, পয়লা মে, সন্তের স্মৃতিতে একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করছে। আমি সন্তরামানুজাচার্যকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করছি, প্রণাম জানাচ্ছি। প্রিয় দেশবাসী, আগামীকাল পয়লা মে তারিখটির আরও একটি গুরুত্বআছে। বিশ্বের বেশ কিছু জায়গায় এই দিনটিকে ‘শ্রমিক দিবস’ হিসেবে পালন করা হয়। আরযখন শ্রমিক দিবসের কথা ওঠে, শ্রম এবং শ্রমিজীবীদের কথা ওঠে তখন বাবাসাহেব আম্বেদকরেরকথা আমার মনে পড়বে, এটাই স্বাভাবিক। গতকাল আমার এক অনুষ্ঠানে যাওয়ারসুযোগ হয়েছিল যেখানে তাঁর বাণীর সঙ্কলন প্রকাশ করা হয়। দ্বাদশ শতাব্দীতে তিনিকন্নড় ভাষায় শ্রম এবং শ্রমিকদের বিষয়ে সুগভীর আলোচনা করেছেন। তেমনি আমার মনে আছে ভারতীয় মজদুর সঙ্ঘেরজনক ও চিন্তাবিদ্‌ শ্রী দত্তোপন্ত ঠেঙ্গড়ি বলতেন, একদিকে যেমন মাওবাদী বিচারধারায়বলা হয়ে থাকে দুনিয়ার মজদুর এক হও, তেমনি দত্তোপন্ত ঠেঙ্গরি বলতেন, ‘মজদুররা এসো,দুনিয়াকে এক করো’। আমার প্রিয় দেশবাসী, কয়েকদিন পরেই আমরা বুদ্ধপূর্ণিমা পালনকরব। দুনিয়ার সব বৌদ্ধধর্মাবলম্বী ওইদিন উৎসব পালন করেন। আর ভারতে তো মহামতি অশোকের জীবনে যুদ্ধ থেকে বুদ্ধেরদিকে যাত্রা এক অনন্য প্রতীক। বুদ্ধপূর্ণিমার এই দিনেই রাষ্ট্রসঙ্ঘ ‘ Vesak Day ’ পালন করে। তাঁর স্মৃতিকে সজীব করে তোলার সুযোগ পাব। আমার প্রিয় দেশবাসী, ভারত সর্বদা ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ –এই মন্ত্রকে পাথেয় করে এগিয়ে যেতে চেষ্টা করেছে। বিশেষ করে আমাদের প্রতিবেশী রাষ্ট্রগুলির ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য। আগামী ৫-ই মে ভারত ‘দক্ষিণ এশিয়াস্যাটেলাইট’ উৎক্ষেপণ করবে। অনেক অনেক শুভেচ্ছা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ হিমাচল প্রদেশের ধরমশালায় রাজ্য সরকারের বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত জন আভার সমাবেশে ভাষণ দিলেন। সমাবেশে আসার আগে প্রধানমন্ত্রী সরকারের বিভিন্ন কর্মসূচির ওপর একটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। এইসব কর্মসূচির সুবিধা-প্রাপকদের সঙ্গেও তিনি কথা বলেন। পরে, এক জনসভায় ভাষণ দিয়ে তিনি হিমাচল প্রদেশকে ‘দেবভূমি’ এবং সাহসিকতার স্থান বলে প্রশংসা করেন। তিনি স্মরণ করেন প্রয়াত প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সঙ্গে এই রাজ্যের বিশেষ সম্পর্কের কথা। গত এক বছরে বিভিন্ন কর্মসূচির মাধ্যমে রাজ্যের সর্বত্র, বিশেষ করে গ্রামাঞ্চলের মানুষের কাছে পৌঁছনোর যে উদ্যোগ রাজ্য সরকার নিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, হিমাচল প্রদেশ সরকার পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামোর ওপর বিশেষ নজর দিচ্ছে। সড়ক, রেল, বিদ্যুৎ, সৌরশক্তি এবং পেট্রোলিয়াম ক্ষেত্রে হিমাচল প্রদেশের বিভিন্ন স্থানে পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চলেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। হিমাচল প্রদেশের পর্যটনের সম্ভাবনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বিস্তারিতভাবে আলোচনা করেন। অনুরূপভাবে, ভারতে অনুমোদিত হোটেলের সংখ্যা ২০১৩-র ১ হাজার ২০০ থেকে বেড়ে বর্তমানে তা ১ হাজার ৮০০ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন যে, ৪০ বছর ধরে আমাদের প্রাক্তন সেনাকর্মীরা ‘এক পদ, এক পেনশন’ – এর দাবি করে আসছেন। তাঁর সরকার ক্ষমতায় আসার পর এ সংক্রান্ত সমগ্র বিষয়টি এবং প্রয়োজনীয় অর্থের যোগানের কথা ভাবা হয়। এরপরই প্রাক্তন সেনাকর্মীদের জন্য ‘এক পদ এক পেনশন’ – এর নীতি রূপায়ণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী হিমাচল প্রদেশের মানুষের পরিচ্ছন্নতা বোধের জন্য তাঁদের বিশেষ প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ঐ রাজ্যের নাগরিকরা স্বচ্ছতাকে তাঁদের সংস্কৃতির অঙ্গ হিসাবে গ্রহণ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের পর্যটন ক্ষেত্রেও এই সংস্কৃতির ভালো প্রভাব পড়বে। প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় সরকারের দুর্নীতি বিরোধী উদ্যোগ বিষয়ে ব্যাখ্যা করেন। জাতীয় খাদ্য সুরক্ষা আইন (এন.এফ.এস.এ.) বলবৎ হয়েছে ৫-৭-২০১৩ থেকে| যার মাধ্যমে দেশের দুই-তৃতীয়াংশ মানুষকে উচ্চ-ভর্তুকি মূল্যে খাদ্যশস্য দেওয়া হচ্ছে – গম দুই টাকা কেজি ও চাল তিন টাকা কেজি দরে| মঙ্গলবার,অর্থাৎ ২ অক্টোবর হিমাচল প্রদেশের বিলাসপুর সফরে যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। কাংড়ার কান্দ্রোরিতে তিনি উদ্বোধন করবেন স্টিল অথরিটি অফ ইন্ডিয়ালিমিটেড (সেল)-এর একটি ইস্পাত প্রক্রিয়াকরণ ইউনিটের। পরে, একজনসমাবেশে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক শ্রম দিবসে দেশের শ্রমজীবী মানুষের কঠোর শ্রম, নিষ্ঠা ও সঙ্কল্পের মানসিকতাকে সম্মান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কেদারনাথ-এ গিয়ে সেখানকার মন্দিরেপ্রার্থনা জানান। এছাড়াও, কেদারনাথ-এ পাঁচটি পরিকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পেরশিলান্যাস করেন তিনি। প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে – মন্দাকিনী নদীতে যে প্রাচীরটিরয়েছে, তাকে আরও শক্তপোক্ত করে গড়ে তোলা এবং নদীর ঘাটটির সংস্কার ও পুনর্নির্মাণ;কেদারনাথ মন্দিরে যাওয়ার প্রধান রাস্তা নির্মাণ; শঙ্করাচার্য কুটির ও শঙ্করাচার্যসংগ্রহশালার সংস্কার ও উন্নয়ন এবং কেদারনাথ মন্দিরের পুরোহিতদের জন্য বাসস্থাননির্মাণ। কেদারপুরী পুনর্নির্মাণ প্রকল্প সম্পর্কে এদিন অবহিত করা হয়প্রধানমন্ত্রীকে। কেদারনাথ-এ এক সমাবেশে ভাষণদানকালে শ্রী মোদী বলেন, দিওয়ালির পর দিনটিতেইকেদারনাথ-এ আসতে পেরে তিনি বিশেষ আনন্দিত। আজ গুজরাটে নববর্ষ উদযাপিত হচ্ছে একথারউল্লেখ করে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী সকলকেই তিনি শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনজানান। শ্রী মোদী বলেন, কেদারনাথ-এ বর্তমানে যে কর্মযজ্ঞ চলছে, তার কাজ সম্পূর্ণহলে আদর্শ তীর্থস্থান বলতে কি বোঝায় প্রত্যেকেই তা অনুভব ও উপলব্ধি করতে পারবেন।পুণ্যার্থীদের জন্য সকল রকম সুযোগ-সুবিধার প্রসার এবং মন্দিরের পুরোহিতদেরকল্যাণের লক্ষ্যেই এই প্রকল্পগুলি রূপায়িত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতি প্রেমীদের কাছে হিমালয় শুধুমাত্র রোমাঞ্চপর্যটনেরই একটি অঞ্চলমাত্র নয়, একই সঙ্গে তা আধ্যাত্মিকতারও এক পুণ্যপীঠ। সকলকেহিমালয় অঞ্চলে উপস্থিত থেকে তাকে নতুনভাবে আবিষ্কার ও উপলব্ধি করার আহ্বান জানানপ্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ষোড়শ লোকসভার শেষ অধিবেশনে ভাষণ দেন। শ্রী মোদী লোকসভায় বিশেষ অবদানের জন্য প্রাক্তন সংসদীয় বিষয়ক মন্ত্রী প্রয়াত অনন্ত কুমারের কথাও স্মরণ করেন। সংসদের এই কক্ষে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায় তিন দশক পর দেশ পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ এক সরকারের কাজকর্ম দেখতে পেল। শ্রী মোদী বলেন, “ভারতের আত্মবিশ্বাস এখন সর্বকালীন উচ্চতায় পৌঁছেছে। আমি মনে করি, এ এক ইতিবাচক লক্ষণ, যা উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে আরও গতি সঞ্চারিত করবে”। তিনি আরও বলেন, ভারত এখন বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতি এবং খুব শীঘ্রই ৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের অর্থনীতি হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিশ্ব আজ আমাদের গুরুত্ব দিয়ে দেখছে কারণ, তারা পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠ এক সরকারকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। অবশ্য, এই স্বীকৃতি দানের কৃতিত্ব ভারতীয়দের প্রাপ্য, যাঁরা ২০১৪ সালে আমাদের সমর্থন জানিয়েছিলেন”। ভারতের সফট্‌ পাওয়ার যোগ সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্ব যোগচর্চাকে স্বীকৃতি দিয়েছে। বহু দেশ এখন বাবাসাহেব আম্বেদকর জয়ন্তী, মহাত্মা গান্ধী জয়ন্তী উদযাপন করছে। সরকারি কাজকর্মের এক খতিয়ান পেশ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, ষোড়শ লোকসভার মেয়াদকালে ২১৯টি বিল পেশ করা হয়েছিল, যার মধ্যে ২০৩টি বিল পাশ হয়েছে। কালো টাকা ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সরকারের কঠোর অবস্থানের কথা পুনরায় উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই লোকসভাতেই ঋণ পরিশোধে অক্ষমতা ও ব্যাঙ্ক দেউলিয়া বিধি, ফেরার অর্থনৈতিক অপরাধী আইনের মতো কঠোর আইন-কানুন পাশ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “এই লোকসভাতেই অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি পাশ হয়। সমগ্র জিএসটি প্রক্রিয়ায় সহযোগিতামূলক মনোভাব ও বিরোধী পক্ষের সমর্থন স্পষ্ট প্রতিফলিত হয়েছে”। প্রধানমন্ত্রী মোদী আধার, আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ ও মাতৃত্বকালীন সুবিধা সহ একাধিক উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন। তিনি আরও বলেন, এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে ষোড়শ লোকসভার মেয়াদকালে ১ হাজার ৪০০-রও বেশি অপ্রয়োজনীয় আইন বাতিল করা হয়েছে। শ্রীলঙ্কারবিদেশ মন্ত্রী মিঃ রবি করুণানায়েকে মঙ্গলবার এখানে এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। গত মাসেআন্তর্জাতিক ভেসক দিবস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর শ্রীলঙ্কা সফরের স্মৃতিচারণপ্রসঙ্গে বলেন যে, তাঁর ঐ শ্রীলঙ্কা সফর শুধুমাত্র ফলপ্রসূই হয়নি, তা বিশেষভাবেস্মরণীয় হয়ে থাকবে। নতুন বিদেশ মন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য মিঃকরুণানায়েকে’কে অভিনন্দন জানান তিনি। শ্রীলঙ্কারসাম্প্রতিক বন্যা ও ভূমিধ্বসের কারণে প্রাণ ও সম্পত্তিহানির ঘটনায় শোক ও সমবেদনাপ্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এ ব্যাপারে ভারতের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সকল রকমসহযোগিতা প্রসারের কথাও পুনরুচ্চারণ করেন তিনি। শ্রীলঙ্কারবন্যা ও ভূমিধ্বসের পরে পরেই ভারতের দ্রুত সহায়তা প্রসারের জন্য শ্রী মোদী’কেধন্যবাদ জানান শ্রীলঙ্কার বিদেশ মন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী শুধুমাত্র তাদের শক্তি ও ক্ষমতার জন্যই খ্যাতি অর্জন করেনি, কৌশলগত দক্ষতা ও দায়িত্বশীলতার কারণেও সশস্ত্র বাহিনীর সুনাম আজ সুবিদিত। এই বাহিনীত্রয় আমাদের সীমান্ত ও সমুদ্রকে রক্ষা করে চলেছে। জাতিকে সুরক্ষিত রাখতে এবং নাগরিকদের অস্তিত্ব নিরাপদ করে তুলতে তারা কর্তব্য করে চলেছে। প্রাকৃতিক বিপর্যয় এবং সংঘাত ও সংঘর্ষের সময় শুধুমাত্র মানুষের মনে তারা আশার সঞ্চারই করে না, সেইসঙ্গে তাদের ত্রাণে এবং মনোবল বৃদ্ধিতে এগিয়ে আসে তারা। আর এইভাবেই বিশ্বের আস্থা অর্জন করেছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী। চেন্নাইতে সশস্ত্র বাহিনী বৃষ্টি ও বন্যার তাণ্ডব থেকে মানুষের জীবন রক্ষা করেছে। নেপালে সাহস ও সহমর্মিতার সঙ্গে তারা কাজ করে গেছে। নেপালের মতো ইয়েমেন-এও শুধুমাত্র সেখানকার নাগরিকদেরই নয়, বিপদগ্রস্ত সকল মানুষের কাছেই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছে আমাদের বাহিনী। আজ আমি সমগ্র জাতির হয়ে সেনাবাহিনীকে জানাই আমার কৃতজ্ঞতা। একইসঙ্গে আমি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করি তাঁদের যাঁরা নীরবে সেবার মধ্য দিয়ে নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাঁদের লক্ষ্য ছিল একটাই – ভারতের অগ্রগতি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের দুর্গম সীমান্ত এলাকায় অতন্দ্র প্রহরায় মোতায়েন সেনাকর্মীরা রয়েছেন আমাদের চিন্তাভাবনায়। আমরা রয়েছি তাঁদের পরিবার-পরিজনদের পাশেই যাঁরা তাঁদের কর্তব্যের খাতিরে বিদায় জানিয়েছেন পরিবারের প্রিয় মানুষটিকে। এমনকি আমরা রয়েছি তাঁদের সেই সমস্ত প্রিয়জনদের পাশেও যাঁদের হয়তো কোন না কোন সময় একদিন কফিন বহন করে আনতে হবে মৃত সেনাকর্মীদের। কিন্তু তাঁদের সেবা ও কল্যাণকে তুলে ধরাই আমাদের কর্তব্য বলে আমরা মনে করি। এই লক্ষ্যেই ‘এক পদ এক পেনশন’ নীতি রূপায়ণের অঙ্গীকার আমরা গ্রহণ করেছি যাতে বহু দশকের অপ্রাপ্তি ও অপূর্ণতার যন্ত্রণা দূর করা যায়। জাতীয় যুদ্ধ স্মারক ও সংগ্রহশালা গড়ে তোলার সঙ্কল্পও গ্রহণ করেছি আমরা। প্রাক্তন সেনাকর্মীদের দক্ষতা উন্নয়নে এবং সুযোগসুবিধা প্রসারে আমরা ব্রতী হয়েছি যাতে বাহিনীর কাজ থেকে অবসর গ্রহণের পরও তাঁরা গর্ব ও মর্যাদার সঙ্গে জাতির সেবা করে যেতে পারেন। দেশের অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের সাহসিকতা ও নিষ্ঠা জম্মু ও কাশ্মীরে সন্ত্রাসবাদকে পরাস্ত করেছে। চরম বামপন্থী হিংসার মতবাদে বিশ্বাসীদের নিরস্ত করেছে এবং দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চলকে শান্তিপূর্ণ এলাকা করে তুলেছে। বহুদিনের নাগা সমস্যার সমাধানে নতুন আশার জন্ম দেওয়ায় যাঁরা এই সমস্যা নিরসনের সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন তাঁদের ভূমিকার আমি বিশেষ প্রশংসা করি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত বর্তমানে পরিবর্তনের এক বিশেষ মুহূর্তে দাঁড়িয়ে। সারা দেশে এখন আশা ও সম্ভাবনার পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে। ভারত সম্পর্কে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গড়ে উঠেছে নতুন আশা ও বিশ্বাসের এক বাতাবরণ। বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত বেড়ে ওঠা প্রধান অর্থনীতিগুলির অন্যতম হল ভারত। আমাদের অর্থনীতি এখন অনেকটাই স্থিতাবস্থায়। আমাদের কল-কারখানায় এখন কাজ চলছে পুরোদমে। ভবিষ্যতের দিকে লক্ষ্য রেখে পরবর্তী প্রজন্মের উপযোগী পরিকাঠামো গড়ে তোলায় সচেষ্ট রয়েছি আমরা। বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণও উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। ভবিষ্যতে যে অফুরন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনার সৃষ্টি হতে চলেছে তা প্রত্যক্ষ করছেন দেশের প্রত্যেক নাগরিক। ভারতের সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার স্বার্থে এই বিষয়গুলি একান্তই জরুরি। এইভাবেই ক্রমশ জোরদার হয়ে উঠছে আমাদের নিরাপত্তা ব্যবস্থা। আমাদের বিদেশ নীতির ক্ষেত্রেও নতুন করে যুক্ত হচ্ছে আশা ও সম্ভাবনা। প্রাচ্যে জাপান, কোরিয়া এবং আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে আমাদের ঐতিহ্যবাহী সম্পর্ককে আমরা আরও জোরদার করে তুলেছি। সেইসঙ্গে, অস্ট্রেলিয়া, মঙ্গোলিয়া এবং প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আমরা গড়ে তুলছি নতুন অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। আফ্রিকার সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ককে আমরা উন্নীত করেছি এক নতুন মাত্রায়। মধ্যপ্রাচ্যের সঙ্গে আমাদের প্রাচীন সংযোগের পথও আমরা খুঁজে পেয়েছি। সর্বোপরি, আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলি ভবিষ্যতে চলার পথে হয়ে উঠেছে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। যদিও এই অঞ্চল এখন নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। আমাদের এই অঞ্চলে রাজনৈতিক অনশ্চিয়তা, দুর্বল প্রশাসন এবং অভ্যন্তরীণ বিবাদ ও সংঘাতের ঘটনা নিয়তই ঘটে চলেছে। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলিতে প্রধান প্রধান শক্তিগুলি ইতিমধ্যেই স্থল ও নৌ-পথে তাদের প্রভাব বিস্তার করে চলেছে। এই অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মালদ্বীপ থেকে শ্রীলঙ্কা, নেপাল থেকে ভুটান – সর্বত্রই আমরা আমাদের পারস্পরিক স্বার্থ ও সম্পর্ককে রক্ষা করার জন্য জোরদার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। স্থল সীমান্ত চুক্তি বাংলাদেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক ও নিরাপত্তা সহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তুলেছে। ইতিহাসের গতিপথ পরিবর্তনে, সন্ত্রাসবাদ নির্মূল করার কাজে, শান্তিপূর্ণ সম্পর্ক গঠনে, সহযোগিতার প্রসারে এবং সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার উন্নয়নে পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককেও আমরা আন্তরিক ও ঘনিষ্ঠ করে তোলার কাজে সচেষ্ট রয়েছি। কিন্তু চেষ্টা আমরা চালিয়ে যাবই। কারণ, শান্তির প্রয়োজন আমাদের শিশুদের নিরাপদ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার স্বার্থে। এই কারণে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ে আলাপ-আলোচনার সূত্রপাতও ঘটিয়েছি আমরা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আফগানিস্তানের জনসাধারণের জন্য এক শান্তিপূর্ণ, সমৃদ্ধ ও ঐক্যবদ্ধ গণতন্ত্র গড়ে তোলার কাজে সহযোগিতা প্রসারেও আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। চিনের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও আমরা উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। বহুদিনের বিতর্কের অবসানে, সীমান্তে স্থিতাবস্থা রক্ষায় এবং পারস্পরিক আস্থার মনোভাবের প্রসারে আমরা আপ্রাণ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। দুটি স্বনির্ভর ও আত্মবিশ্বাসী জাতি হিসেবে ভারত ও চিন পরস্পরের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পর্কের প্রসারে জোরদার প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলেই আমার বিশ্বাস। কারণ, এই দুটি দেশ তাদের পারস্পরিক স্বার্থ ও দায়িত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট মাত্রায় সচেতন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দ্রুত পরিবর্তনশীল এই বিশ্বে ভারত প্রতিনিয়ত নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। আমাদের এই চ্যালেঞ্জ রয়েছে স্থল, সমুদ্র এমনকি বিমানপথেও। সন্ত্রাসবাদ থেকে শুরু করে পরমাণু অস্ত্রের ব্যবহার – নানা ধরনের হুমকির প্রতিনিয়তই সম্মুখীন হচ্ছি আমরা। তাই আমাদের দায়িত্বশীলতা শুধুমাত্র স্থলসীমা বা উপকূলরেখা বরাবরই আবদ্ধ নয়। বহুদিনের শত্রুতার সম্পর্ক মহাকাশ এবং সাইবার জগতে নতুন নতুন আশঙ্কার জন্ম দিচ্ছে। কিন্তু, নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন নতুন এবং পুরনো যেকোন ধরনের হুমকির মোকাবিলা করার কাজে আমাদের আরও সাহস যুগিয়ে চলছে। তাই, ভারতকে শুধুমাত্র বর্তমানের জন্য প্রস্তুত থাকলেই চলবে না, ভবিষ্যতের জন্যও প্রস্তুতি নিতে হবে আমাদের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত তার প্রতিরক্ষা বাহিনীর শক্তি ও ক্ষমতা সম্পর্কে খুবই আত্মবিশ্বাসী। যেকোন আক্রমণ প্রতিহত করার ক্ষমতা যে বাহিনীর রয়েছে এ কথা আজ সুপ্রতিষ্ঠিত। সীমান্ত অঞ্চলে রেলের প্রসার আমাদের এই প্রকৌশলেরই একটি অঙ্গ। নতুন নতুন নীতি বা উদ্যোগের মাধ্যমে দেশে প্রতিরক্ষা উৎপাদনের বিষয়টিকেও আমরা নতুন রূপ দিতে চলেছি। সরকারি সংস্থাগুলি বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় নিজেদের ক্রমশ শক্তিশালী করে তুলছে। বেসরকারি ক্ষেত্রগুলি থেকে আমরা সাড়া পেয়েছি উৎসাহজনকভাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে আমাদের শক্তি ও ক্ষমতার প্রসার তথা বৃদ্ধি যদি আমরা না ঘটাতে পারি তাহলে কখনই আমরা নিজেদের এক সুরক্ষিত জাতি কিংবা এক জোরদার সামরিক শক্তি হিসেবে তুলে ধরতে পারব না। এই দুটি বিষয় সম্ভব করে তোলার সঙ্গে সঙ্গে মূলধন ও উদ্ভাবন খাতে আমাদের ব্যয়সাশ্রয়ও সুনিশ্চিত হবে। সেইসঙ্গে, প্রসার ঘটবে শিল্প, কর্মসংস্থান ও অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার। আমাদের সংগ্রহ নীতি ও প্রক্রিয়াকেও আমরা অচিরেই সংশোধন করতে চলেছি। প্রতিরক্ষা প্রযুক্তির ক্ষেত্রেও আমাদের সামর্থ্য ও দক্ষতাকে বাড়িয়ে তোলার নীতি আমরা গ্রহণ করছি। প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি এখন আমাদের জাতীয় কর্মপ্রচেষ্টাগুলিরই অন্যতম প্রধান একটি অঙ্গ। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সাফল্যে আমাদের সশস্ত্র বাহিনী পালন করবে এক সক্রিয় ভূমিকা। আমাদের লক্ষ্য ও লক্ষ্যমাত্রা খুবই স্বচ্ছ ও সুস্পষ্ট। প্রতিরক্ষা সাজসরঞ্জামের উদ্ভাবন, নকশা তৈরি ও উন্নয়ন – সমস্ত ক্ষেত্রেই আমাদের সশস্ত্র বাহিনী উত্তরোত্তর সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। ভবিষ্যতের লক্ষ্যে প্রস্তুতও রয়েছে তারা। উচ্চপর্যায়ের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রেও আমরা সংস্কারের পক্ষপাতী। আবার, এই বছরটি হল এমনই এক সন্ধিক্ষণ যখন দারিদ্র্য ও জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় রাষ্ট্রসঙ্ঘে সমস্ত দেশই একজোট হয়ে সাড়া দিয়েছে বিশ্ব মানবতার স্বার্থে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সিঙ্গাপুরে নানিয়াং প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় পরিদর্শন করেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় তাঁদের বেশ কিছু প্রশ্নের উত্তর দেন। ‘একুশ শতকে এশিয়ার সামনে চ্যালেঞ্জ’ বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রায়ই শোনা যায় যে একুশ শতক এশিয়ার শতক। তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের ওপর আস্থা থাকা বিশেষভাবে প্রয়োজন এবং এটাও জানা প্রয়োজন যে এবার আমাদের সময় এসেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সময়ের দাবি মেনে উঠে দাঁড়াতে হবে এবং নেতৃত্ব হাতে নিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী, সাম্প্রতিক চিন সফরে গিয়ে সে দেশের রাষ্ট্রপতি সি জিন পিং-এর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাৎকারের প্রসঙ্গ তোলেন। এই কৃতিত্ব কোনরকম বিরোধ ছাড়াই অর্জিত হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের বিরোধ ছাড়াই যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর জোর দিতে হবে। অন্য এক প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, সুপ্রশাসনের ক্ষেত্রে মহাকাশ প্রযুক্তির এক প্রধান ভূমিকা রয়েছে। এই প্রযুক্তি সাধারণ মানুষের জীবন দারুণভাবে উন্নত করে তুলতে পারে। মহাকাশ প্রযুক্তি আমাদের উন্নয়ন পরিকাঠামোর যথাযথ মানচিত্র তৈরিতে বিশেষ সহায়তা করে, যেমন কোথায় আমাদের স্কুল দরকার, কোথায় সড়ক আর কোথায়ই বা হাসপাতাল প্রয়োজন তা এই প্রযুক্তি ব্যবহার করে আমরা জানতে পারি। ঐতিহ্য এবং বিশ্বায়নের মধ্যে সামঞ্জস্য বিধান বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, মানবজাতি উদ্ভাবনের মধ্য দিয়েই যুগের পর যুগ ধরে এগিয়ে চলেছে এবং নৈতিকতা ও মানবিক মূল্যবোধেরও এক্ষেত্রে অবদান রয়েছে। তিনি বলেন, প্রযুক্তি মানুষের সৃজনশীলতাকে সাহায্য করছে। বিভিন্ন সামাজিক গণমাধ্যম লক্ষ লক্ষ মানুষকে তাঁদের মত প্রকাশের অধিকার দিয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে অন্তর্ভুক্ত বৃদ্ধি সুনিশ্চিত করা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, বর্তমানের ‘ডিসরাপশন’ নামে অভিনব যে প্রযুক্তির কথা শোনা যাচ্ছে, তার অর্থ কিন্তু ধ্বংস নয়। তিনি বলেন, প্রযুক্তি মানুষের ক্ষমতায়ন করে এবং প্রযুক্তি-নির্ভর সমাজ সামাজিক প্রতিবন্ধকতার বেড়া ভেঙে দেয়। তবে, এই প্রযুক্তিকে সুলভ এবং ব্যবহারকারীদের উপযোগী করে তুলতে হবে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। মউ স্বাক্ষরের দিন থেকে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্যএই সহযোগিতা চুক্তি বহাল থাকবে। এর আগে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি মাইসুরু এলে বিমান বন্দরে তাঁকে অভ্যর্থনা জানান কর্ণাটকের রাজ্যপাল শ্রী বাজুভাই বালা ও মুখ্যমন্ত্রী শ্রী সিদ্দারামাইয়া| প্রধানমন্ত্রী সম্প্রতি প্যারিসে অনুষ্ঠিত সি.ও.পি.-২১ এর বৈঠক এবং সেখানে ভারতের নেতৃত্বে গৃহীত ‘উদ্ভাবনা মিশন’ ও ‘আন্তর্জাতিক সৌর জোট’ উদ্যোগের উল্লেখ করেন| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী শ্রী দাতো সেরি মহম্মদ নাজিব বিন টুন আব্দুল রাজাক-এর সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক আলোচনায় বসেছিলেন। দুই রাষ্ট্রনায়ক যৌথভাবে কুয়ালালামপুরের ‘লিটল ইন্ডিয়ায়’ ‘তোরণ দ্বার’-এর উদ্বোধন করেন। সাঁচীস্তুপের বিখ্যাত তোরণ দ্বারের অনুপ্রেরণায় এই প্রবেশ পথটি নির্মিত হয়েছে। এই ‘তোরণ দ্বার’ কেবল এক ভাস্কর্য মাত্রই নয়, এটি হল দু’দেশের সাংস্কৃতিক বন্ধনের যোগসূত্র। প্রধানমন্ত্রী এই সঙ্গেই গৌতমবুদ্ধের কথা স্মরণ করে বলেন, শতসহস্র বছর আগে তিনি গোটা এশিয়া জুড়ে শান্তির বাণী প্রচার করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী মালয়েশিয়ার কর্পোরেট স্তরের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলোচনায় বসেন অর্থনৈতিক যোগাযোগ সুদৃঢ় করতে। তিনি বলেন, ভারত হল আজকের পৃথিবীর সবচেয়ে দ্রুত বিকাশশীল অর্থনীতি এবং স্থিতিশীল রাজনৈতিক অবস্থা থাকায় এদেশে বিনিয়োগের প্রভূত সম্ভাবনা রয়েছে। মঞ্চে উপস্থিত সম্মানীয় অতিথিবৃন্দ, ২০১৮-র পার্টনার্স ফোরামে সারা বিশ্ব থেকে আগত প্রতিনিধিদের সাদর আমন্ত্রণ জানাই। বিভিন্ন দেশ এককভাবে তাঁদের প্রচেষ্টা চালানোর সময় পেরিয়ে এসেছে। তবে, এখনও আমাদের অনেক কিছু করা বাকি। বড় বাজেট তৈরি থেকে শুরু করে উন্নত ফলাফল এবং সর্বোপরি মানসিক চিন্তাভাবনা পরিবর্তন থেকে শুরু করে এই প্রেক্ষিতে নজরদারি ব্যবস্থার উন্নতি, সব ক্ষেত্রেই আমাদের অনেক কিছু করতে হবে। ব্যবহারিক পরিবর্তন সুনিশ্চিত করার আশা। আশা এই যে, দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করা সম্ভব হবে। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, কোনও দেশের মহিলা ও শিশু যখন শিক্ষিত হন, স্বাধীনভাবে জীবনযাপন করতে পারেন, তাঁদের সঠিকভাবে ক্ষমতায়ন করা যায় এবং যথাযথভাবে জীবনযাপন করতে পারেন, সেই দেশই তখন উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলে। ২০১৪ সালে আমার সরকার যখন দায়িত্বভার গ্রহণ করে, তখন আমরা প্রতি বছর শিশুর জন্ম দিতে গিয়ে ৪৪ হাজার মা’কে হারাতাম। আমাদের এই প্রয়াসের ফলে, গত চার বছরের তুলনায় বর্তমানে প্রতিদিন ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৮৪০ জনকে অতিরিক্ত জীবনদান করা সম্ভব হচ্ছে। পোষণ অভিযানের মাধ্যমে শিশুর পুষ্টির বিষয়ে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। যে বিষয়টি আমাদের অনবরত ভাবিয়ে তোলে, সেটি হ’ল স্বাস্থ্য পরিষেবার জন্য ব্যয়বহুল ব্যবস্থা। এই সমস্যা সমাধানে আমরা চালু করেছি আয়ুষ্মান ভারত যোজনা। এর দুটি ভাগ রয়েছে। আমরা ২০২২ সালের মধ্যে এ ধরণের ১ কোটি ৫০ লক্ষ স্বাস্থ্য কেন্দ্র গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছি। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের অন্য একটি ভাগ হ’ল – প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা। এই জনসংখ্যা প্রায় কানাডা, মেক্সিকো ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মোট জনসংখ্যার সমতুল। আমরা এই প্রকল্প চালুর ১০ সপ্তাহের মধ্যেই ৫ লক্ষ পরিবারকে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা দিয়েছি, যার আর্থিক মূল্য প্রায় ৭০০ কোটি টাকা। বিশ্বের সর্বজনীন স্বাস্থ্য পরিষেবার মানোন্নয়নে আমরা কাজ করে যাব বলে আমি আবারও প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি। আমি আমার আধিকারিকদের এমন ১১৭টি সম্ভাবনাময় জেলা চিহ্নিত করার নির্দেশ দিয়েছি। এই প্রতিটি জেলায় শিক্ষা, জল, স্বচ্ছতা, গ্রামোন্নয়ন, স্বাস্থ্য ও পুষ্টির মানোন্নয়নে একটি দল কাজ করবে। অন্যান্য বিভাগেও মহিলা-কেন্দ্রিক প্রকল্প চালুর জন্য আমরা কাজ করছি। ২০১৫ সাল পর্যন্ত ভারতের মহিলাদের অর্ধেকই রান্নার জন্য স্বচ্ছ জ্বালানি পেতেন না। এই প্রকল্পের আওতায় সুবিধাভোগীদের ব্যাঙ্ক অ্যাককাউন্টে সরাসরি নগর হস্তান্তরের ব্যবস্থা রয়েছে। আগামী দু’দিনে এই মঞ্চে স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সারা বিশ্বের সাফল্যের ১২টি কাহিনী নিয়ে আলোচনা হবে। যৌথ ডাকটিকিটগুলি জুন মাসে প্রকাশ করা হয়। এই ডাকটিকিটগুলিতে ভারতের দীনদয়াল উপাধ্যায় এবং দক্ষিণ আফ্রিকার অলিভার রেজিনাল্ড টাম্বোর ছবি রয়েছে। ভারত ও সেনেগালের মধ্যেস্বাস্হ্য এবং চিকিৎসা ক্ষেত্রে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্তিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। দুপক্ষেরমধ্যে সহযোগিতার মূল বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে ১)রোগ-অসুখের ওপর পূর্ণাঙ্গনজরদারি ২)চিকিৎসা গবেষণা ৪)হাসপাতাল ব্যবস্হাপনা ৫)ওষুধও সংক্রান্ত উৎপাদন / হাসপাতাল সরঞ্জাম ৮)পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্ট অন্য যে কোনও বিষয় এছাড়া হোমিওপ্যাথি প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষকদের নিয়োগ এবং পদোন্নতির পূর্বে গুণমান মূল্যায়ণের জন্য পরীক্ষার প্রস্তাব করা হয়েছে। জাতীয় মেডিক্যাল কমিশনের সঙ্গে সঙ্গতি বজায় রেখে হোমিওপ্যাথির মেডিক্যাল শিক্ষায় সংশোধনের প্রস্তাব এই বিলে রয়েছে। ভারত ও আফগানিস্হানেরমধ্যে অপরাধী প্রত্যর্পণ চুক্তি স্বাক্ষরের বিষয়টি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ অনুমোদিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮-তে ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে স্বাস্থ্যবিমা কর্মসূচি, আয়ুষ্মান ভারত – প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার সূচনা করেছেন। এক বিশাল জনসভায় এই কর্মসূচির সূচনা করার আগে প্রধানমন্ত্রী এই কর্মসূচি বিষয়ে একটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। ঐ অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকেই প্রধানমন্ত্রী চাইবাসা ও কোডারমায় দুটি মেডিকেল কলেজের শিলান্যাস উপলক্ষে দুটি ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। তিনি দশটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করেন এই অনুষ্ঠান থেকে। কর্মসূচিটির ব্যাপকতার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পে ক্যান্সার ও হৃদযন্ত্রের সমস্যা সহ মোট ১,৩০০ ধরণের রোগের এই প্রকল্পে চিকিৎসা করা যাবে। বেসরকারি হাসপাতালগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। বিমার ৫ লক্ষ টাকায় সমস্ত ধরণের স্বাস্থ্য সংক্রান্ত পরীক্ষা, ওষুধ এবং হাসপাতালে ভর্তির আগের চিকিৎসা ব্যয় ধরা হবে। পুরনো এবং বিমার আগের রোগেরও এতে চিকিৎসা হবে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষ ১৪৫৫৫ নম্বরে ফোন করে অথবা অভিন্ন পরিষেবা কেন্দ্র থেকে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে সব রাজ্য পিএমজেএওয়াই কর্মসূচির অন্তর্ভুক্ত হয়েছে, সাধারণ মানুষ সেইসব রাজ্যে গেলেও বিমার সুযোগ পাবেন। তিনি জানান, দেশের ১৩ হাজারেরও বেশি হাসপাতাল এই কর্মসূচিতে যুক্ত হয়েছে। আগামী চার বছরে এই ধরণের স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সংখ্যা দেড় লক্ষে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার দেশের স্বাস্থ্যক্ষেত্রের উন্নয়নে সার্বিকতার ধারণায় কাজ করে চলেছে। সবার নাগালের মধ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং প্রতিরোধমূলক পরিষেবা, এই উভয় ক্ষেত্রের ওপরেই জোর দেওয়া হচ্ছে বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (১২ অক্টোবর) জাতীয় মানবাধিকার কমিশন বা এনএইচআরসি প্রতিষ্ঠার রজত জয়ন্তী সমারোহ অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এই উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী একটি স্মারক ডাকটিকিট এবং স্পেশাল কভারের উদ্বোধন করবেন। কমিশনের ওয়েবসাইটের নতুন সংস্করনেরও সূচনা করবেন তিনি। নতুন এই ওয়েবসাইটটি ব্যবহারকারিদের কাছে আরো বেশি ব্যবহারের উপযোগী হয়ে উঠবে। ভারত সরকারেরসচিব পর্যায়ের দুই গোষ্ঠী রবিবার প্রধানমন্ত্রীর কাছে স্বাস্থ্য, স্বাস্থ্যবিধি ওনগরোন্নয়ন এবং শিল্প ও বাণিজ্য বিষয়ে ধারণা পেশ করেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভারসদস্যগণ এবং নিতি আয়োগের আধিকারিকরাও ঐ বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। এই মউ-এর ফলে একটি যৌথ কার্যকরীগোষ্ঠী গঠিত হবে| যার সদস্যরা থাকবেন মহাকাশ বিভাগ/ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ডি.ও.এস./ইসরো)এবং নেদারল্যান্ড স্পেস অফিস (এন.এস.ও.) জি-স্যাট-৬-এর সফল উৎক্ষেপণে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ‘ইসরো’-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অভিনন্দন বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, আমাদের বিজ্ঞানীদের আরেকটি সাফল্যের দিন আজ। জি-স্যাট-৬-এর সফল উৎক্ষেপণের জন্য ‘ইসরো’-কে অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তর প্রদেশের সন্তকবীর নগর জেলার মাঘার পরিদর্শন করেন। শ্রী মোদী বলেন, সন্ত কবীরের মধ্যে ভারতাত্মার মূল সুরটি ধ্বনিত হয়েছে। জাতপাতের গণ্ডি অতিক্রম করে সাধারণ গ্রাম্য ভারতীয় ভাষায় তিনি সকলের সঙ্গে কথা বলতেন। রাজনৈতিক সুবিধাবাদের বিরুদ্ধে জোরালো বক্তব্য পেশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যিনি সাধারণ মানুষের দুঃখ, কষ্ট ও অনুভূতিগুলিকে উপলব্ধি করতে পারেন তিনি হলেন কবীরের শিক্ষাদর্শ অনুযায়ী প্রকৃত ও আদর্শ শিক্ষক। মানুষে মানুষে বিভেদ ও বৈষম্যের পেছনে যে সমস্ত সামাজিক প্রথা ও রীতিনীতি কাজ করত তার ঘোরতর বিরোধী ছিলেন সন্ত কবীর। রেল, সড়ক, অপটিক্যাল ফাইবার সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজে বর্তমানে যে গতি সঞ্চার ঘটেছে সেকথাও তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের সুফল যাতে দেশের প্রত্যেক প্রান্তে পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে সচেষ্ট রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার সর্দার সরোবর বাঁধ প্রকল্পটি উৎসর্গ করেন জাতিরউদ্দেশে। কেভাড়িয়ায় এই প্রকল্প স্থলে প্রার্থনা ও মন্ত্রোচ্চারণের মধ্য দিয়ে একবিশিষ্টতা লাভ করে এই অনুষ্ঠানটি। বাঁধটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ অনুষ্ঠানকে স্মরণীয়করে রাখতে একটি ফলকেরও এদিন আবরণ উন্মোচন করেন প্রধানমন্ত্রী। নর্মদা নদীরওপর নির্মিত সর্দার সরোবর বাঁধটি সর্দার প্যাটেলেরই স্বপ্নের বাস্তবায়ন বলে স্মৃতিচারণকরেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, সর্দার প্যাটেল এবং ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরউভয়েই সেচ ও জলপথগুলির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, জলসম্পদের অপ্রাচুর্য উন্নয়নের পথে এক বিশেষ অন্তরায়। সীমান্ত রক্ষী বাহিনীরসদস্যরা যে পর্যাপ্ত জলের অভাব অনুভব করেন, একথাও অতীতেতাঁর সীমান্ত অঞ্চল পরিদর্শনেরঅভিজ্ঞতা থেকে তুলে ধরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নর্মদার জলকে সীমান্ত অঞ্চলেজওয়ানদের কাছে পৌঁছে দিয়েছি আমরা। শ্রী মোদীবলেন, সর্দার সরোবর বাঁধ নির্মাণের পেছনে এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছেগুজরাটের সাধু-সন্তদের। নর্মদা নদীর জল যে নাগরিকদের জীবনে এক বিশেষ পরিবর্তন ঘটাতেচলেছে একথারও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীবলেন যে দেশের পশ্চিম প্রান্তে যখন জলের যোগানে প্রচুর ঘাটতি রয়ে গেছে, তখন দেশেরপূর্বাঞ্চলে রয়েছে বিদ্যুৎ ও গ্যাসের অভাব। এই ধরনের ঘাটতি পূরণে সরকার যে নিরলসপরিশ্রম করে চলেছে, সেকথার উল্লেখ করেতিনি বলেন, ভারত উন্নয়নের এক নতুন শিখরে এখনআরোহণ করতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত স্বচ্ছ কুম্ভ, স্বচ্ছ আভার অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। প্রয়াগরাজে পৌঁছে পবিত্র সঙ্গমে গঙ্গার জলে স্নান করে কিছু সাফাইকর্মীর চরণ বন্দনা করে, কুম্ভকে পরিচ্ছন্ন রাখার যে অসাধারণ প্রচেষ্টা ওই সাফাইকর্মীরা চালিয়েছেন তাকে সম্মাননা জানান। কুম্ভ স্নানের জন্য প্রয়াগরাজে যেসব পূর্ণার্থী আসেন, তাঁদের জন্য সর্বোত্তম ব্যবস্হা নিশ্চিত করতে যাঁরা প্রয়াসী হয়েছেন, তাঁদেরকে কর্মযোগী আখ্যা দেন প্রধানমন্ত্রী। এই প্রেক্ষিতে এনডিআরএফ, মাঝি, স্হানীয় জনগণ এবং সাফাইকর্মীদের উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। শ্রী মোদী বলেন, এবছর কুম্ভ যে প্রশংসা অর্জন করতে পেয়েছে তারজন্য এই সাফাইকর্মীদের অবদান অনস্বীকার্য। প্রধানমন্ত্রীর এও অভিমত, তিনি যখন কিছু কিছু সাফাইকর্মীর চরণ বন্দনা করেন, সেই বিশেষ মুহূর্তটি চিরকাল স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছ সেবা সম্মান কোষ যেটির আজ ঘোষণা করা হল, সেটি সাফাইকর্মী ও তাদের পরিবারকে প্রয়োজনের সময় সাহায্য করতে পারবে। শ্রী মোদী এও বলেন, স্বচ্ছ ভারত অভিযান দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। তাঁর অভিমত, এবছর ২ অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীর ১৫০-তম জন্মবার্ষিকীর আগেই দেশ উন্মুক্ত স্হানে শৌচ-মুক্ত দেশ হয়ে উঠতে পারবে। কেন্দ্রীয় সরকার এবং নমামী গঙ্গের পরিণাম-ই এটি। তিনি বলেন, যেসব নালা গঙ্গা নদীতে পড়ছে সেগুলি আবর্জনাময় হওয়ায় এবছর সেগুলিতে যথাযথ নিকাশী ব্যবস্হা গড়ে তোলা হয়েছে। এ প্রসঙ্গে কয়েকদিন আগে তিনি যে ১,৩০ কোটি টাকা মূল্যের সিওল শান্তি পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন সেটি প্রসঙ্গও উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, এই অর্থ তিনি নমামী গঙ্গে মিশনে দান করবেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে তিনি যেসব উপহার পেয়েছেন সেগুলিরও নিলাম করা হয়েছে বলে শ্রী মোদী জানান এবং বলেন এই নিলামের ফলে যে অর্থ এসেছে তা নমামী গঙ্গেতে দান করা হয়েছে। কুম্ভে যেসব মাঝিরা অক্লান্ত পরিশ্রম করেছে তাদেরও অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্বাধীনতার পরে এই প্রথম পূণ্যার্থীরা অক্ষয় বট প্রত্যক্ষ করতে পেরেছেন। প্রধামন্ত্রী এই উপলক্ষে উত্তরপ্রদেশের পুলিশ প্রশাসনের ভূমিকারও প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তর প্রদেশের বারানসী সফর করেন। বারানসী’তে তিনি আন্তর্জাতিক ধান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠান জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। প্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন পরীক্ষাগারও তিনি ঘুরে দেখেন। দীনদয়াল হস্তকলা সঙ্কুলে প্রধানমন্ত্রী “এক জেলা, এক পণ্য’ শীর্ষক প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। এরপর, তিনি পেনশন প্রদান ও পরিচালনার লক্ষ্যে এক সুসংবদ্ধ প্রকল্পের সূচনা করেন। বারানসীতে একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ উপলক্ষে ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। আজ যেসব প্রকল্পের আবরণ উন্মোচন করা হয়েছে, সে প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, এগুলির সবকটিরই অভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে, তা হল – জীবনযাপনের মানোন্নয়ন ও সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা। তিনি উত্তর প্রদেশ সরকারের ‘এক জেলা, পণ্য’ প্রকল্পটিকে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সম্প্রসারিত অঙ্গ হিসাবে বর্ণনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তর প্রদেশে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ রাজ্যের ঐতিহ্যের অঙ্গ হয়ে রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ভাদোহির কার্পেট শিল্প, মীরাটের ক্রীড়া সাজসরঞ্জাম, নির্মাণ শিল্প, বারানসীর দুগ্ধ শিল্প প্রভৃতির কথাও উল্লেখ করেন। তিনি আরও বলেন, ‘এক জেলা, এক পণ্য’ প্রকল্পের মাধ্যমে উন্নত মানের যন্ত্র ও সাজসরঞ্জাম, প্রশিক্ষণ ও বিপণন সহায়তার ফলে শিল্পকলা ক্ষেত্র আরও প্রসারিত হবে। এই অনুষ্ঠানে ২ হাজার কোটি টাকা ঋণ সহায়তা প্রদানের ব্যাপারে তাঁকে অবহিত করা হয়েছে বলে শ্রী মোদী জানান। তিনি বলেন, ‘এক জেলা এক পণ্য’ প্রকল্পে উৎপাদকদের সহায়তার পাশাপাশি উৎপাদিত সামগ্রীর বিপণনেও গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। দীনদয়াল হস্তকলা সঙ্কুল এই প্রকল্পের উদ্দেশ্যগুলি পূরণ করছে। সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নের পাশাপাশি, সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান। আজ চালু হওয়া পেনশন প্রদান কর্তৃপক্ষ ও পরিচালনা ব্যবস্থা ‘সম্পন্ন’ – এর কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই ব্যবস্থার ফলে টেলিযোগাযোগ দপ্তরে পেনশন-প্রাপকরা বিশেষভাবে উপকৃত হবেন এবং সময় মতো পেনশন প্রদান আরও সরল হয়ে উঠবে। সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে প্রযুক্তির ব্যবহারের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার একইভাবে নাগরিক-কেন্দ্রিক পরিষেবা প্রদানেও প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে। তিনি বলেন, ডাকঘরগুলির মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার বিস্তারে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক বড় ভূমিকা নিয়ে চলেছে। বারানসীতে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক ধান্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে কৃষি ক্ষেত্রকে আরও লাভজনক করে তোলার উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত বহন করছে এই কেন্দ্রটি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশীর ব্যাপক রূপান্তর এখন সকলেরই দৃষ্টিগোচর হয়েছে। আজ যে সমস্ত প্রকল্পের সূচনা হয়েছে, সেগুলি এই শহরের আরও পরিবর্তন আনতে ব্যাপক সাহায্য করবে। বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় শেখ হাসিনা, পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় মমতা ব্যানার্জি, বিগত চার বছরে ভারতে যে লক্ষ্যণীয় গতিতে শৌচালয়ের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পেয়েছে, তারজন্য আমরা গর্বিত। পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন ভারত গড়ে তোলা এবং আরো ভালো শৌচালয়ের সুযোগ-সুবিধা সুনিশ্চিত করার বিষয়টি এখন গণ আন্দোলন হয়ে উঠেছে। ১৩০ কোটি ভারতীয় বিশেষ করে মহিলা ও যুবারা এই আন্দোলনে অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছেন। এর ফলে মোট ৩৭,৮৭০ জন ডক ও বন্দর কর্মীবিশেষভাবে উপকৃত হবেন। এজন্য সংশ্লিষ্ট বছরগুলির প্রত্যেকটিতে অতিরিক্ত ব্যয় হবে৪৯ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা। তিনি ঝাড়সুগুদায় একটি মাল্টি-মোডাল লজিস্টিক পার্ক জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন এবং অন্যান্য বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী বলাঙ্গির থেকে বিচুপালির মধ্যে একটি নতুন রেল লাইনেরও উদ্বোধন করবেন। এছাড়া, সোনপুরে তিনি কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়ের একটি স্থায়ী ভবনের শিলান্যাস করবেন। ঝাড়সুগুদায় উন্নতমানের পরিবহণ কাঠামো গড়ে তোলার লক্ষ্যে ১০০ কোটি টাকা ব্যয়ে মাল্টি-মোডাল লজিস্টিক পার্ক গড়ে তোলা হচ্ছে। এখান থেকে আমদান-রপ্তানি এবং অভ্যন্তরীণ পণ্য পরিবহণ ও বেসরকারি উদ্যোগে পণ্য লেনদেনের ব্যবস্থা হবে। এই পার্কটি হাওড়া – মুম্বাই রেলপথের ঝাড়সুগুদা রেল স্টেশন থেকে পাঁচ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই পার্কের কাছাকাছি ইস্পাত, সিমেন্ট, কাগজ-সহ বিভিন্ন ধরণের শিল্প কারখানা রয়েছে এবং এগুলি এই পরিবহণ পরিকাঠামোর সুবিধা পাবে। এই লজিস্টিক পার্কটি ঝাড়সুগুদাকে সমগ্র ওডিশার মধ্যে একটি প্রধান পরিবহণ কেন্দ্র হিসাবে প্রতিষ্ঠা দেবে এবং এই রাজ্যে সহজে ব্যবসার সুবিধা আরও বাড়বে। ১৫ কিলোমিটার দীর্ঘ বলাঙ্গির থেকে বিচুপালির মধ্যে নতুন রেল লাইনটি উপকূলবর্তী ওড়িশার সঙ্গে পশ্চিম ওড়িশার যোগাযোগ স্থাপন করবে এবং সারা রাজ্যে উন্নয়নের ভারসাম্য আনবে। এছাড়া, নতুন দিল্লি এবং মুম্বাইয়ের মতো প্রধান শহরগুলি থেকে ভুবনেশ্বর ও পুরী যাতায়াতের সময় কমবে। নতুন এই রেল লাইনটি এই অঞ্চলে অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র, মাঝারি ও ওড়িশার কুটির শিল্পের পক্ষে সহায়ক ভূমিকা নেবে এবং এই রাজ্যের খনি ক্ষেত্রের জন্য নতুন সুযোগ সৃষ্টি করবে। ঐ দিন তাঁর সফরের সময়ে প্রধানমন্ত্রী নিম্নলিখিত প্রকল্পগুলির সূচনা করবেন – ঝাড়সুগুদা থেকে ভিজিনগরম্‌ এবং সম্বলপুর থেকে আঙ্গুলের মধ্যে রেলপথের বৈদ্যুতিকীকরণ প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। ১০৮৫ কোটি টাকা ব্যয়ে মোট ৮১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই রেলপথটি বিদ্যুতায়িত হলে এই অঞ্চলে রেল যোগাযোগের আরও উন্নতি হবে। এর ফলে, ২০১৭ সালের জুলাই মাসের বন্যায় নাগাভ্যালি নদীর ওপর ভেঙে পড়া এই সেতুটি পুনর্নির্মিত হওয়ায় এই রেলপথে যোগাযোগ পুনঃস্থাপিত হবে। তিনি সুফিবাদের পরম্পরার উল্লেখ করে বলেন, “কাশ্মীরের শতাব্দী প্রাচীন ধর্মনিরপেক্ষতা অর্থাৎ কাশ্মীরিয়ত ছাড়া ভারত অসম্পূর্ণ”| জম্মুরিয়তের (গণতন্ত্র) ওপর সে রাজ্যের মানুষের বিশ্বাস পুনরায় প্রতিফলিত হওয়ায় তিনি তাঁদের প্রশংসা করেন এবং বলেন, ইন্সানিয়তের ওপর ভিত্তি করেই জম্মু ও কাশ্মীরের অগ্রগতি হতে হবে| এইনতুন ক্যাম্পাস উদ্বোধনের সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। বিশ্ব অর্থনীতি বর্তমানে মন্দাকবলিত। উন্নত রাষ্ট্র এবং উদ্ভূত বাজার উভয়েরই বিকাশের গতি এখন যথেষ্ট মন্থর। এইপরিস্থিতিতে একমাত্র উজ্জ্বল বিন্দু হয়ে উঠতে পেরেছে ভারত। এখানে বিকাশের হার ওগতি এখন বিশ্বের মধ্যে সর্বোচ্চ। ঐ সময় আর্থিক ঘাটতির পরিমাণ পৌঁছে গিয়েছিল এক বিপজ্জনকমাত্রায়। শুধু তাই নয়, চলতি হিসাব খাতে ঘাটতি তখন ক্রমশ বেড়েই চলেছে। এরই ফলশ্রুতিতে দেশে চলতিহিসাব খাতে ঘাটতি এখন খুবই কম। ২০১৩ সালে নগদ ঘাটতির ফলে গৃহীত ঋণ শোধ করাসত্ত্বেও বিদেশি মুদ্রার মজুতভাণ্ডার এখন যথেষ্ট শক্তিশালী। মুদ্রাস্ফীতির হারশুধু কমই নয়, পূর্ববর্তী সরকারের দুই অঙ্কের মুদ্রাস্ফীতি থেকে তা এখন নেমে এসেছে৪ শতাংশেরও কমে। বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলার লক্ষ্যেও আমরাএগিয়ে গিয়েছি অনেকটাই। আমাদের এই সমস্ত নীতি রূপায়ণের সুবাদে প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগের পরিমাণ এখন পৌঁছে গেছে এক রেকর্ড মাত্রায়। আধুনিকঅর্থনীতিতে আর্থিক বাজারের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। তবে,ইতিহাসে আমরা দেখেছি যে আর্থিক বাজার সঠিকভাবে নিয়ন্ত্রিত না হলে তা ক্ষতিরও কারণহয়ে দাঁড়ায়। সুনিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যেই সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফইন্ডিয়া (সেবি) গঠন করে কেন্দ্রীয় সরকার। শেয়ার বাজারকে আরও চাঙ্গা ও বলিষ্ঠ করে তোলারকাজে সেবির এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। সাম্প্রতিককালেফরওয়ার্ড মার্কেট্‌স কমিশনের অবলুপ্তি ঘটেছে। পণ্য সম্পর্কিত বিভিন্ন লেনদেননিয়ন্ত্রণেরও দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে সেবিকে। এর ওপর আবার বহুপণ্যই দরিদ্র ও অভাবী মানুষ কিনে থাকে সরাসরি, বিনিয়োগকারীদের মাধ্যমে নয়। এইকারণেই পণ্য ক্রয়-বিক্রয়ের বিষয়টি অর্থনৈতিক ও সামাজিক প্রেক্ষাপটে যথেষ্টসংবেদনশীল। আর্থিকবিপণন ব্যবস্থার কাজকর্মকে সফল করে তুলতে হলে এই কাজের সঙ্গে যুক্ত সকলকেই যথেষ্টমাত্রায় ওয়াকিবহাল থাকতে হবে। আমি খুবই আনন্দিত যে ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফসিকিউরিটিজ মার্কেট্‌স (এনআইএসএম) সংশ্লিষ্ট অংশগ্রহণকারীদের প্রশিক্ষণদানেরমাধ্যমে তাঁদের দক্ষতার শংসাপত্র দেওয়ার কাজ করে আসছে। আমাদের বর্তমান লক্ষ্য হলএক ‘দক্ষ ভারত’ গড়ে তোলা। ভারতীয় যুবসমাজকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের যুবশক্তিরসঙ্গে প্রতিযোগিতা ও প্রতিদ্বন্দ্বিতায় অবতীর্ণ হতে হবে। তাই, ক্ষমতা তথা দক্ষতাবৃদ্ধির কাজে এই প্রতিষ্ঠানটির ভূমিকা যথেষ্ট জরুরি ও গুরুত্বপূর্ণ। আমি জানতেপেরেছি যে প্রতি বছর ১ লক্ষ ৫০ হাজারের মতো প্রার্থী এনআইএসএম-এর পরীক্ষায় বসেন। এপর্যন্ত ৫ লক্ষেরও বেশি প্রার্থী শংসাপত্র লাভ করেছেন এনআইএসএম থেকে। সুনিয়ন্ত্রিতশেয়ার বাজারের জন্য ভারত ইতিমধ্যেই বেশ সুনাম অর্জন করেছে। বাণিজ্যিক ক্ষেত্রেবৈদ্যুতিন ব্যবস্থার প্রয়োগ আমাদের বাজারগুলিকে এখন আগের থেক অনেক বেশি স্বচ্ছ করেতুলেছে। একটি প্রতিষ্ঠান হিসেবে এই কাজের জন্য সেবির গর্বিত হওয়ার কথা। তাসত্ত্বেও আমাদের শেয়ার ও পণ্য বাজারের ক্ষেত্রে এখনও অনেক কিছু করাই বাকি। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে স্টার্ট আপ সংস্থাগুলিকে উৎসাহিতকরতে আমার সরকার বিশেষভাবে আগ্রহী। স্টার্ট আপ-এর উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলারক্ষেত্রে শেয়ার বাজারের ভূমিকা অনস্বীকার্য। তবে, আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী এবংঅর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কাছ থেকে শেয়ার বাজারের সাফল্য সম্পর্কে প্রশংসাই কিন্তুযথেষ্ট নয়। · সবক’টি ক্ষেত্রের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় · বিরাট সংখ্যক নাগরিকের কল্যাণ প্রচেষ্টায়। সুতরাং,আর্থিক বাজার পুরোপুরি সফল কিনা, তা নির্ধারণ করার জন্য এই তিনটি চ্যালেঞ্জেরমোকাবিলা করা প্রয়োজন। প্রথমত,আমাদের শেয়ার বাজারের প্রাথমিক লক্ষ্য হওয়া উচিৎ উৎপাদনশীল উদ্দেশ্যে মূলধনবৃদ্ধি। এই প্রসঙ্গে আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করব পরিকাঠামো ক্ষেত্রটির। বর্তমানে শুধুমাত্র সরকার কিংবা বিশ্বব্যাঙ্ক অথবাজেআইসি-এর মতো আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি পরিকাঠামো প্রকল্প রূপায়ণে দীর্ঘ মেয়াদেলগ্নি করতে সক্ষম। কিন্তু এই পথ থেকে ধীরে ধীরে সরে আসতে হবে আমাদের। বন্ড বাজারকেনিশ্চিতভাবেই পরিকাঠামো খাতে দীর্ঘ মেয়াদি লগ্নির এক উৎস রূপে গড়ে তুলতে হবে। নগরপরিকাঠামো উন্নয়নের কাজে যে এক বিশাল মূলধন চাহিদা রয়েছে সে সম্পর্কে আপনারা সকলেইঅবগত। দ্বিতীয়ত,সমাজের এক বৃহত্তম অংশ অর্থাৎ, কৃষকদের কাছে সুফল পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন বাজারেরমাধ্যমে। এই কাজে সাফল্য কতখানি তা পরিমাপ করা যাবে গ্রামের ওপর তার ফলাফলে, দালালস্ট্রিট কিংবা লুটিয়েন্স দিল্লির মাধ্যমে নয়। এই মাপকাঠির দিক থেকে বিচার করলে একদীর্ঘ পথ আমাদের এখন অতিক্রম করতে হবে। কৃষি প্রকল্পগুলিতে উদ্ভাবনী পদ্ধতিতেমূলধনের যোগান নিশ্চিত করতে হবে আমাদের শেয়ার বাজারগুলিকে। জনসাধারণের অনেকেই বিশ্বাস করেন যেকৃষকদের ঝুঁকি কমানোর কাজে শেয়ার বাজারের এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে। কিন্তু বাস্তবেভারতের কৃষক সমাজের এ সম্পর্কে ধারণা প্রায় নেই বললেই চলে। এটাই সত্যি বা প্রকৃতঘটনা। যতদিন না আমরা পণ্য বাজারকে সরাসরিভাবে কৃষকদের পাশে দাঁড় করাতে পারব, ততদিনপর্যন্ত তা আমাদের অর্থনীতিতে একটি বহুমূল্য অলঙ্কার ছাড়া আর কিছুই হতে পারে না।কারণ, সেটিকে একটি প্রয়োজনের হাতিয়ার রূপে আমরা এখনও গড়ে তুলতে পারিনি। ই-নামঅর্থাৎ, প্রযুক্তিচালিত জাতীয় কৃষি বাজার চালু করেছে বর্তমান সরকার। ই-নাম-এর মতোএকটি তাৎক্ষণিক বাজারকে শেয়ার বাজারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত করে কৃষকদের কাছেতার সুফল পৌঁছে দিতে হবে সেবিকে। তৃতীয়ত,আর্থিক বাজার থেকে যাঁরা লভ্যাংশ অর্জন করেন, কর প্রদানের মাধ্যমে তাঁদের উচিৎজাতি গঠনের কাজে অবদান সৃষ্টি করা। বিভিন্ন কারণে বাজার থেকে যাঁরা আর্থিক লাভ ঘরেতোলেন, করবাবদ তাঁদের অবদানের মাত্রা খুবই নগন্য। বিভিন্নধরনের আর্থিক আয়ের ক্ষেত্রে স্বল্প বা শূন্য করের সুযোগ দেওয়া হয়। বাজারেরকাজকর্মের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত, জাতীয় অর্থনীতিতে তাঁদের অবদান কতটুকু সে সম্পর্কেচিন্তাভাবনা করার জন্য আমি আপনাদের আহ্বান জানাব। এই অবদানকে সৎ, দক্ষ এবং স্বচ্ছউপায়ে বাড়িয়ে তোলার কথা আমাদের সকলকেই চিন্তাভাবনা করতে হবে। এর আগে, একটা ধারণাকাজ করত যে কর সংক্রান্ত কিছু কিছু সুযোগের মাধ্যমে বিনিয়োগকারীদের একটি অংশ অসৎকাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত। আপনারা জানেন যে কর সংক্রান্ত ঐ সংস্থানগুলি সরকারের পক্ষথেকে সংশোধন করা হয়েছে। তাই, এখন আমাদের সামনে সময় এসেছে, সরল ও স্বচ্ছ অথচ সৎ ওপ্রগতিশীল এক কর ব্যবস্থা গড়ে তোলার। আমিজানি যে আর্থিক বাজারগুলির যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে আমাদের বাজেটের ক্ষেত্রে। আবার,বাজেটের বিশেষ প্রভাব রয়েছে দেশের প্রকৃত অর্থনীতিতে। তাই নতুন যুগের উপযোগী এক আর্থিক বাজার গড়ে তোলার কাজে আপনাদের সকলের কাছথেকেই আরও বেশি করে অবদানের প্রত্যাশা করি আমরা। এনআইএসএম-এর আমি সর্বাঙ্গীণসাফল্য কামনা করি। রিও,২০১৬ প্যারা-অলিম্পিক্স-এ অংশগ্রহণকারী ভারতীয় খেলোয়াড়দের জন্য আমাদের সকলের পক্ষথেকেই রইল বিশেষ শুভেচ্ছা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ওমানের সঙ্গে অসামরিক ও বানিজ্যিক বিষয়ে আইন ও বিচার বিভাগীয় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার চুক্তিতে স্বাক্ষর ও আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দিতে অনুমোদন দিয়েছে| প্রস্তাবিত এই চুক্তির প্রধান বৈশিষ্ট্য হচ্ছে: ক) বিচার বিভাগীয় আদেশ, সমন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে পরিষেবা খ) আইনি ও বিচার বিভাগীয় সনদ, নথিপত্র অথবা প্রক্রিয়া গ) অনুরোধের মাধ্যমে প্রামাণ্য তথ্য গ্রহণ ঘ) আদালতের রায়, নিস্পত্তি ও সালিশী বিধান সম্পাদন সম্পর্কিত বিষয় | ঙ) চুক্তি স্বাক্ষরের আগে অথবা পরের কোনো অসামরিক অথবা বানিজ্যিক বিষয়ে পারস্পরিক আইনি সহাতায় অনুরোধের ক্ষেত্রেও এই চুক্তি কার্যকর হবে| চ) সমন অথবা অন্যান্য বিচার বিভাগীয় নথিপত্রের পরিষেবার অনুরোধ এই যুক্তি দেখিয়ে প্রত্যাখ্যান করা যাবে না যে এতে যথেষ্ট পরিমানে সহায়ক গুরুত্ব বা যথার্থতা নেই; অবশ্য যদি সংশ্লিষ্ট রাষ্ট্র মনে করে যে এই অনুরোধ সেই দেশের সার্বভৌমত্ব, নিরাপত্তা অথবা জননীতি উল্লঙ্ঘন করবে, সে ক্ষেত্রে অন্য কথা| ছ) যে দেশের বাসিন্দা সেই দেশের আদালতে বিচারের কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য সেই দেশের কূটনৈতিক ও বাণিজ্য দূতাবাসের প্রতিনিধি পর্যায়েও কোনো রকম জবরদস্তি ছাড়াই তথ্য প্রমান গ্রহণে এই চুক্তি কার্যকর হবে| ঝ) এই চুক্তির ধারা ১৯০৮ সালের সিভিল প্রসিডিওর কোড এবং ১৯৯৬ সালের আরবিট্রেশন এন্ড ক্যানসেলেশন অ্যাক্ট-এর সঙ্গে সাযুজ্যপূর্ণ | কেন্দ্রীয়স্বাধীনতা সংগ্রামী পেনশনার ও তাঁদের যোগ্য নির্ভরশীলদের বর্তমান পেনশন প্রকল্পনিম্নলিখিতভাবে পুনর্গঠিত হয়েছে:- অবসরকালীন ভাতার বর্তমান পরিমাণ (প্রতিমাসে) অবসরকালীন ভাতার বর্ধিত পরিমাণ (প্রতিমাসে) প্রাক্তন আন্দামান রাজনৈতিক বন্দী/জীবনসঙ্গী স্বাধীনতা সংগ্রামী যারা ব্রিটিশ ভারতের বাইরে কষ্টভোগ করেছেন নির্ভরশীল পিতামাতা/যোগ্য কন্যা (যেকোনো সময়ে সর্বাধিক তিনজন কন্যা) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থা এবং সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে বিভিন্ন সরকারি বিভাগ ও সংগঠনের মধ্যেকার বাণিজ্যিক বিরোধ নিষ্পত্তি ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। সচিবদের কমিটির সুপারিশের ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। অবশ্য, প্রচলিত স্থায়ী সালিশি ব্যবস্থার সঙ্গে নতুন এই দ্বিস্তরীয় ব্যবস্থাটি যুক্ত হবে। প্রথম পর্যায়ে যে কোনও বাণিজ্যিক বিরোধ বিভিন্ন প্রশাসনিক মন্ত্রক ও বিভাগের সচিবদের কমিটির কাছে পাঠানো হবে। এই কমিটির কাছে বিবদমান দুটি দপ্তর/মন্ত্রকের আর্থিক উপদেষ্টারা এই বিবাদ বিষয়ে তাঁদের মন্ত্রকের পক্ষে বক্তব্য জানাবেন। দ্রুত বিবাদ নিষ্পত্তির জন্য প্রথম পর্যায়ের ব্যবস্থায় সালিশি বা আলোচনার মাধ্যমে বিবাদ মেটানোর জন্য তিন মাস সময়সীমা থাকবে। সমস্ত কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কাছে খুব শীঘ্রই তাঁদের সংশ্লিষ্ট প্রশাসনিক মন্ত্রক/বিভাগ এবং রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সরকারের কাছে এ বিষয়ে একটি বিস্তারিত নীতি-নির্দেশিকা পাঠানো হবে। এই বিল পেশের উদ্দেশ্য হল – প্রস্তাবিত আঞ্চলিক কেন্দ্রটিকে আইনি মর্যাদা দান; সেইসঙ্গে জৈব প্রযুক্তি ক্ষেত্রে শিক্ষা, প্রশিক্ষণ ও গবেষণার একটি জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠান হিসেবে এর স্বশাসিত পরিচালন। উল্লেখ্য, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার সম্মতিক্রমে ২০০৮-এর নভেম্বর মাসে কেন্দ্রীয় সরকারের এক প্রশাসনিক নির্দেশে এই প্রতিষ্ঠানটি ইতিমধ্যেই স্থাপন করা হয়েছে। ফরিদাবাদে জৈব প্রযুক্তি সংক্রান্ত পঠন-পাঠন ও গবেষণার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটিতে। ভারতীয় পুলিশ সেবার (ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস) ২০১৬ব্যাচের ১১০ জনেরও বেশি আধিকারিক প্রশিক্ষণার্থীরা আজ এখানে সাক্ষাৎ করেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। স্বাধীনতার সময়কাল থেকে শুরু করে এ পর্যন্ত যে ৩৩হাজার পুলিশকর্মী কর্মরত অবস্থায় কর্তব্যের স্বার্থে তাঁদের প্রাণ বিসর্জন দিয়েছেনতাঁদের কথা প্রসঙ্গত স্মরণ করেন শ্রী মোদী। চুক্তি কাঠামো স্বাক্ষরের প্রস্তাবে স্থানীয় তথা আঞ্চলিক পর্যায়েদ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বারাণসী’তে‘দীনদয়াল হস্তকলা সঙ্কুল’ নামে একটি হস্তশিল্পের বাণিজ্যিক বিপণন কেন্দ্র জাতিরউদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী ২০১৪ সালের নভেম্বর মাসে এই কেন্দ্রেরভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন। আজ তিনি ঐ কেন্দ্রটি ঘুরে দেখেন এবং কেন্দ্রটিউৎসর্গ করার জন্য মঞ্চে আসার আগে এই কেন্দ্রে বিভিন্ন ধরনের সু্যোগ-সুবিধার বিষয়েতাঁকে অবহিত করা হয়। শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এক ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমেমহামানা এক্সপ্রেসের যাত্রা সূচনা করেন। এই ট্রেনটি বারাণসীর সঙ্গে সুরাট এবংগুজরাটের ভদোদরার মধ্যে সংযোগ স্থাপন করবে। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী শহরে বিভিন্ন ধরনেরউন্নয়মূলক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন এবং বেশ কয়েকটি প্রকল্প জাতিরউদ্দেশে উৎসর্গ করেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন,একটি মঞ্চের একটি অনুষ্ঠান থেকেই ১ হাজার কোটি টাকার সমতুল বিভিন্ন প্রকল্পের হয়ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে অথবা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়েছে। তিনি ‘দীনদয়াল হস্তকলা সঙ্কুল’-এর মতো হস্তশিল্পেরবাণিজ্য পরিষেবা কেন্দ্রকে দীর্ঘ সময়ের মধ্যে বারাণসীর জন্য অন্যতম বৃহৎ প্রকল্পহিসাবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, এই কেন্দ্রটি হস্তশিল্পী ও তন্তুবায়দের হাতের কাজও কর্মদক্ষতা বিশ্বের কাছে তুলে ধরার ব্যবস্থা করবে এবং তাঁদের জন্য এক উজ্জ্বলভবিষ্যতের সূচনা করবে। তিনি এই শহরে আগত পর্যটকদের এই কেন্দ্রে আসার জন্য উৎসাহদিতে সাধারণ মানুষের কাছে আহ্বান জানান। এর ফলে, হস্তশিল্পের চাহিদা আরও বৃদ্ধিপাবে ও বারাণসীর পর্যটনের সম্ভাবনা উন্নত করবে এবং শহরের অর্থনীতির উন্নয়নেও সহায়কহবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের মধ্যেই সব সমস্যারসমাধান লুকিয়ে আছে। তিনি বলেন, সরকার দরিদ্র মানুষের জীবনে সদর্থক পরিবর্তন আনারদিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছে। এই প্রসঙ্গে তিনি উৎকর্ষ ব্যাঙ্কের কর্মোদ্যোগের বিশেষপ্রশংসা করেন। জল অ্যাম্বুলেন্স এবং জল শববাহন পরিষেবার সূচনাপ্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলপথের মাধ্যমেও উন্নয়নের উদ্যোগ এই কাজের মধ্য দিয়েপ্রতিফলিত হয়েছে। মহামানা এক্সপ্রেস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন,২০১৪ সালে সংসদীয় নির্বাচনে তিনি যে দুটি কেন্দ্র থেকে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন,সেই ভদোদরা ও বারাণসীর মধ্যে রেলের মাধ্যমে যোগাযোগ স্থাপিত হ’ল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ বর্তমানে দ্রুত গতিতেএগিয়ে চলেছে এবং জাতির স্বার্থে বেশ কিছু দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (৮ই মার্চ) উত্তরপ্রদেশের গাজিয়াবাদ সফর করেন এবং সেখানে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেন। তিনি হিন্ডন বিমানবন্দরের সিভিল টার্মিনাল ভবনের সূচনা উপলক্ষে ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। এরপর, শ্রী মোদী সিকান্দরপুর সফর করেন এবং সেখানে দিল্লি-গাজিয়াবাদ-মিরাট আঞ্চলিক দ্রুতগতিসম্পন্ন পরিবহণ ব্যবস্থার শিলান্যাস করেন। এরপর তিনি বিবিধ উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা এবং সরকারি প্রকল্পগুলির সুবিধাভোগীদের শংসাপত্র প্রদান করেন। শ্রী মোদী গাজিয়াবাদে শহীদ স্থল (নিউ বাস আড্ডা) মেট্রো স্টেশন সফর করেন এবং সেখান থেকে দিলশাদ গার্ডেন পর্যন্ত মেট্রো রেল পরিষেবার যাত্রা সূচনা করেন। তিনি মেট্রোও সফর করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হিন্ডন বিমানবন্দরের নতুন অসামরিক টার্মিনাল ভবনটি নির্মিত হওয়ার ফলে গাজিয়াবাদের মানুষ এখন দিল্লি থেকে বিমানের পরিবর্তে নিজের শহর থেকে অন্যত্র বিমানে যাত্রা করতে পারবেন। তিনি আর বলেন, অতি অল্প সময়ের মধ্যে এই সিভিল টার্মিনালের নির্মাণ কেন্দ্রীয় সরকারের আন্তরিকতা এবং কর্মসংস্কৃতিকেই প্রতিফলিত করে। তিনি জানান, শহীদ স্থল থেকে মেট্রো পরিষেবার নতুন শাখার সূচনার ফলে উত্তরপ্রদেশ ও দিল্লির মধ্যে মেট্রো সফরকারীদের সময় সাশ্রয় হবে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে দিল্লি এবং মিরাটের মধ্যে যাত্রার সময় কমবে। গাজিয়াবাদে যে আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে, তার দরুণ শহর ও সংলগ্ন এলাকার মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়ন ঘটবে। এ ধরণের আধুনিক পরিকাঠামো সারা দেশেই নির্মাণ করা হচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি আরও জানান, ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা’র আওতায় ২ কোটিরও বেশি কৃষক তাঁদের প্রথম কিস্তির অর্থ ইতিমধ্যেই পেয়েছেন। তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, আয়ুষ্মান ভারত, পিএম-কিষাণ, পিএম-শ্রমযোগী মান-ধন যোজনা প্রভৃতি কর্মসূচির মাধ্যমে তাঁর সরকার অসম্ভবকে সম্ভব করে তুলছে। এ বছর জানুয়ারি মাসে ডেনমার্কের খাদ্য পরিষেবামূলক প্রতিষ্ঠান ডব্লিউআইপি-র ভারত সফরের সময় মউটি স্বাক্ষরিত হওয়ার কথা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিল্লীর এক বিদ্যালয়ে “স্বচ্ছতাই সেবা” আন্দোলনে অংশ নিয়ে সেখানে শ্রমদান করেন। দেশের ১৭টি জায়গা থেকে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে মতবিনিময়কালে ‘স্বচ্ছতাই প্রকৃত সেবা’ আন্দোলনের সূচনার অব্যবহিত পরেই প্রধানমন্ত্রী মধ্য দিল্লীর রানী ঝাঁসি রোডে অবস্হিত বাবাসাহেব আম্বেদকর উচ্চবিদ্যালয়ে যান। সেখানে তিনি বাবাসাহেব আম্বেদকরের মূর্তিতে পুস্পার্ঘ অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান এবং পরিচ্ছন্নতা অভিযানে অংশ নেন। বিদ্যালয় পড়ুয়াদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন এবং তাদেরকে স্বচ্ছতা অভিযানের ব্যাপারে উৎসাহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী প্রথাগত প্রোটোকল ছাড়াই স্বাভাবিক যানজটের মধ্যেই ঐ বিদ্যালয়ে পৌঁছান এবং সেখান থেকে ফিরে আসেন। ঐ বিদ্যালয়ে তাঁর সফরের জন্য বিশেষ কোনও যাতায়াতের বন্দোবস্ত করা হয়নি। আজএক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন’-এর গ্র্যান্ড ফিনালেতে ভাষণদিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অংশীদারিত্বমূলক প্রশাসন তথা পরিচালনব্যবস্থার গুরুত্বের বিষয়টি তিনি তুলে ধরেন তাঁর এদিনের ভাষণে। শ্রীমোদী বলেন, দেশের সবচেয়ে বড় সম্পদ হল শ্রমশক্তি এবং ইচ্ছাশক্তি। জনসাধারণ যদিপরিবর্তনকে বাস্তবায়িত করতে আগ্রহী হয়ে ওঠেন, তাহলে তা অবশ্যম্ভাবী। কিন্তু কোন সরকারযদি মনে করে যে সে একাই এই পরিবর্তন সূচিত করতে পারবে, তাহলে তা একটি বড় ভুল ছাড়াআর কিছুই হতে পারে না। গতবছরের তুলনায় এ বছরের হ্যাকাথনে অংশগ্রহণকারীর সংখ্যা উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধিপাওয়ায় স্পষ্টতই খুশি ও আনন্দ প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এর আগেরহ্যাকাথনে যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছিল, তা ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ হয়েছেবলে তিনি জানতে পেরেছেন। ‘মেকইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিটি কিভাবে একটি ব্র্যান্ড হয়ে উঠেছে এবং সারা বিশ্বেইজনপ্রিয়তা লাভ করেছে, তার একটি দৃষ্টান্তও এদিন তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। স্বাস্থ্য,কৃষি, স্থাপত্য, আইনকানুন বিষয়ক এবং গ্রামীণ বিকাশ সম্পর্কিত ভিন্ন ভিন্ন হ্যাকাথনআয়োজনের সম্ভাবনা খতিয়ে দেখার জন্যও আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন,উদ্ভাবন প্রতিভাসম্পন্ন কৃষিবিদ, প্রযুক্তিবিদ, স্থপতি, চিকিৎসক, আইনজীবী এবংব্যবস্থাপক ও প্রবন্ধকের প্রয়োজন রয়েছে আমাদের দেশে। সুতরাং, এই ধরনের হ্যাকাথনেরআয়োজন করা হলে দেশে প্রতিভা উন্মেষের এক নতুন মঞ্চ গড়ে উঠবে। ‘প্রগতি’র মঞ্চেবিভিন্ন উন্নয়ন প্রকল্প সম্পর্কে তাঁর নিয়মিত পর্যালোচনা বৈঠকের কথাও এদিন উল্লেখকরেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, এনডিএ সরকারের উন্নয়নমূলক উদ্যোগগুলির ফলে বহু মানুষ উপকৃত হয়েছেন, যার প্রতিফলন ঘটেছে এবারের বাজেটে।এই বাজেটে কৃষক কল্যাণ থেকে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের সুবিধার কথা, আয়করে ছাড় থেকে পরিকাঠামো ক্ষেত্র, পরিকাঠামো ক্ষেত্র থেক ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের কল্যাণের কথা ভাবা হয়েছে। ধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুনদিল্লীতে লোককল্যাণ মার্গে এক অনুষ্ঠানে সহজে ব্যবসার সুযোগ বিষয়ে মহা চ্যালেঞ্জ কর্মসূচির সূচনা করেছেন। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে, কৃত্রিম মেধা, ইন্টারনেট অফ থিংস, বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স ব্লকচেইনের মতো অত্যাধুনিক প্রযুক্তি-ভিত্তিক অভিনব ধারনা বা প্রস্তাব আহ্বান করা, যার মাধ্যমে সরকারি কর্মপ্রক্রিয়ার সংস্কার করা যায়। স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া পোর্টালকেই এই মহা চ্যালেঞ্জের মঞ্চ হিসাবে ব্যবহার করা হবে। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক জমায়েতে প্রধানমন্ত্রী ‘সহজে ব্যবসার সুযোগ’-এর বিশ্ব ক্রমতালিকায় ভারতের অবস্হানকে উন্নত করার জন্য উদ্যোগ নেওয়ায় শিল্পমহলকে ধন্যবাদ জানান। তিনি স্মরণ করেন যখন ‘সহজে ব্যবসার সুযোগ’ সংক্রান্ত বিশ্ব সূচকে ভারতের স্হানকে শীর্ষস্হানীয় ৫০টি দেশের মধ্যে নিয়ে যাওয়ার কথা তিনি প্রথম উত্থাপন করেছিলেন, তখন তাঁর কথায় সন্দেহ প্রকাশ করা হয়েছিল। কিন্তু মাত্র চার বছরে আমরা অনেকদূর অগ্রসর হতে পেরেছি বলে তিনি জানান। এই সময়ে সহজে ব্যবসার সুযোগের সূচকে ভারত ৬৫ ধাপ এগিয়েছে। তিনি বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে ভারত প্রথম স্হানে রয়েছে এবং শীর্ষস্হানীয় ৫০টি দেশের তালিকায় ভারতের স্হান করে নিতে আর মাত্র কয়েক ধাপ বাকি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়তার ধারণায় কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি সহজে ব্যবসার সুযোগকে আরও উন্নত করতে একযোগে কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সুনির্দিষ্ট নীতির ভিত্তিতে প্রশাসন পরিচালনা ও স্বচ্ছ নীতির ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার যে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে, সাধারণ মানুষের জীবনযাপনকে আরও সহজ করে তোলাও তার অন্যতম লক্ষ্য। গত চার বছরে ১৪০০’র ও বেশি পুরনো আইন সরকার বাতিল করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আই.এম.এফ এবং মুডিজের মতো সংস্হাগুলিও ভারতের ভবিষ্যৎ নিয়ে আশাবাদী। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন- কতো কম সময়ের মধ্যে ভারতকে ৫ লক্ষ কোটি ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করা যায় সেটাই আমাদের লক্ষ্য। তবে এর জন্য অর্থনীতির সর্বক্ষেত্রে আরও উন্নতির প্রয়োজন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমান বাস্তব পরিস্হিতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে শিল্পনীতির লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে এবং এই নীতি নতুন ভারতের উদ্যোগপতিদের নতুন ধ্যান-ধারনার সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হবে। প্রধানমন্ত্রী সহজে ব্যবসা সুযোগের ক্রমতালিকায় ভারতকে শীর্ষস্হানীয় ৫০টি দেশের মধ্যে পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্য অর্জনে কাজ করার জন্য সমাবেশে উপস্হিত সকলের কাছে আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন- আধুনিক ও ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে শিল্পসংস্হা কাজের প্রক্রিয়ায় মানুষের হস্তক্ষেপ করা দরকার। এই সঙ্গেই, ২০০৭ সালের আনুমানিক বেতন হারের নিরিখেআকর্ষণীয় স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প চালু করার মাধ্যমে এইচ এম টি ট্যাক্টর বিভাগটি বন্ধকরে দেওয়ার সিদ্ধান্তও মঞ্জুর করেছে। এই সিদ্ধান্তেরআর্থিক তাৎপর্য (নগদ অর্থ প্রদান) ৭১৮.৭২ টাকার কেননা এই অর্থে বকেয়া বেতন, মজুরিএবং অন্যান্য বিধিবদ্ধ প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়া ছাড়াও স্বেচ্ছাবসরমূলক এককালীন অর্থপ্রদান ও ব্যাঙ্ক এবং ঋণদাতাদের প্রতি ট্র্যাক্টর বিভাগের দায় মেটানোর বিষয়টিওঅন্তর্ভুক্ত রয়েছে। মন্ত্রিসভায় এইসঙ্গেই ব্যাঙ্গালোর ও কোচিতে এইচ এম টি সংস্থার জমি ছোট ছোট খন্ডে অন্যান্য সরকারিসংস্থাকে বৃহত্তর জনস্বার্থে হস্তান্তর করার বিষয়টিও মঞ্জুর করেছে। এই সংস্থা দেশের কারিগরি ও প্রস্তুতিগত সক্ষমতা গড়ে তোলারক্ষেত্রে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে এসেছে। হরিয়ানার পিঞ্জোরে ১৯৭১ সালে এইচ এমটি’র ট্র্যাক্টর বিভাগটি গড়ে তোলা হয়। ট্র্যাক্টর বিভাগটি ধারাবাহিকভাবে লোকসানে চলতে থাকায় কর্মীদের বেতনএবং অন্যান্য প্রাপ্য মিটিয়ে দিতে অসমর্থ হয়ে পড়ে। তিঞ্জোরের ট্র্যাক্টর বিভাগেরকর্মীরা ২০১৪ সালের জুলাই মাস থেকে বেতন পাচ্ছেন না, তাঁদের অন্যান্য প্রাপ্যওবকেয়া রয়েছে ২০১৩ সালের নভেম্বর মাস থেকে। এই অবস্থায় এইচ এম টি ট্র্যাক্টরবিভাগটি বন্ধ করে দেওয়ার আগে প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার জন্য এবং কর্মীদের জন্যআকর্ষণীয় হারে স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প ঘোষণার সিদ্ধান্ত হয়। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী ২২ এবং ২৩ সেপ্টেম্বর তাঁর সংসদীয় কেন্দ্র বারাণসী সফর করবেন। বারাণসী সফরকালেপরিকাঠামো, রেলওয়ে, বস্ত্র বয়ন শিল্প, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, পরিবেশ এবং অনাময়,পশুপালন, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিষয়বস্তু-কেন্দ্রিক নানান অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী অংশগ্রহণকরবেন। প্রধানমন্ত্রীবড়া লালপুর এলাকায় হস্তশিল্পের একটি বাণিজ্যিক বিপণন কেন্দ্র – ‘দীনদয়াল হস্তকলাসঙ্কুল’কে জাতির প্রতি উৎসর্গ করবেন। তিনি সঙ্কুল-এ এই কেন্দ্র স্বল্প সময়ের জন্যঘুরে দেখবেন। পরে, শ্রী মোদী ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে মহামানা এক্সপ্রেস-এর যাত্রাসূচনা করবেন। এই ট্রেনটি বারাণসীর সঙ্গে সুরাট এবং গুজরাটের ভদোদরার মধ্যে সংযোগস্থাপন করবে। একইঅনুষ্ঠানস্থলে প্রধানমন্ত্রী শহরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের ভিত্তিপ্রস্তরের আবরণউন্মোচন করবেন অথবা প্রকল্প উৎসর্গ করবেন। উৎকর্ষ ব্যাঙ্ক মাইক্রোফিনান্স বা অতিক্ষুদ্র ঋণদানের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা নিয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রীএক ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে জল অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা এবং জল শববাহন পরিষেবাবারাণসীর মানুষদের জন্য উৎসর্গ করবেন। ২২সেপ্টেম্বরের সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী বারাণসীর ঐতিহাসিক তুলসী মানস মন্দির সফরেযাবেন। তিনি রামায়ণের ওপর একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করবেন। পরে, প্রধানমন্ত্রী শহরেরদুর্গা মাতা মন্দিরেও যাবেন। জাতীয় বিজ্ঞান দিবসে বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রেমীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রসঙ্গে, বিজ্ঞান জগতে বিশেষ অবদানের নজির সৃষ্টিকারী ভারতীয় বিজ্ঞানী স্যার সি ভি রামনের কথাও স্মরণ করেছেন তিনি। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “জাতীয় বিজ্ঞান দিবসে বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রেমীদের অভিনন্দন জানাই। গবেষণা ও উদ্ভাবনী শক্তির বিকাশ আমাদের দেশে উত্তরোত্তর প্রসার লাভ করুক – এই কামনা করি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর মেয়াদকালে বিভিন্ন জায়গা থেকে পাওয়া মেমেন্টোর পক্ষকালব্যাপী নিলাম প্রক্রিয়া গত শনিবার সন্ধ্যায় শেষ হয়েছে। দেশবাসীর কাছ থেকে এ ব্যাপারে বিপুল সাড়া পাওয়া গেছে। দিল্লির ন্যাশনাল গ্যালারি অফ মর্ডান আর্টে pmmementos.gov.in ওয়েবসাইটে ই-অকশন পদ্ধতির মাধ্যমে দু’দিন ধরে দুই পর্যায়ে এই নিলাম প্রক্রিয়া চলে। এই দু’দিনে ১ হাজার ৮০০টি মেমেন্টো সফলভাবে নিলাম করা হয়। নিলামে পাওয়া অর্থ নমামি গঙ্গে কর্মসূচির জন্য ব্যয় করা হবে। নিলাম পর্বের কিছু উল্লেখযোগ্য দিক – এনজিএমএ-তে আয়োজিত এই নিলাম প্রক্রিয়ায় হাতে নির্মিত একটি কাঠের বাইক সর্বোচ্চ দর ৫ লক্ষ টাকায় বিক্রি করা হয়। অশোক স্তম্ভের একটি কাঠের রেপলিকা, যার আসল দাম ৪ হাজার টাকা। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ইন্সটিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস্‌ অফ ইন্ডিয়া (আইসিএআই) এবং আফগানিস্তানের শংসাপত্র-প্রাপক অ্যাকাউন্ট্যান্টদের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রে অনুমোদন দিয়েছে। আফগানিস্তান, ভারত এবং আইসিএআই-কে পরোক্ষভাবে কর্মসংস্থানে সাহায্য করবে। গত কয়েক বছরে দু’দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব ও সম্পর্ক আরও মজবুত হয়েছে। স্বাধীনতা সংগ্রামের অমর শহীদ বাঘাযতীনের আত্মোৎসর্গ দিবসের শতবর্ষে তাঁকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, “বাঘাযতীনের শহীদ হওয়ার শতবর্ষে ওঁকে অভিবাদন ও শ্রদ্ধা। এই পর্যায়ে ৯.০৫১ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রথম রেলপথ নির্মাণে ব্যয় হবে ৩ হাজার ৭৭০ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত এই প্রকল্পটি রূপায়ণের দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সরকার ও সংশ্লিষ্ট রাজ্য সরকারের। বুধবার গুজরাট সফরকালেইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রী শ্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু এবং তাঁর পত্নী মিসেস সারা নেতানিয়াহু-রসঙ্গে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আমেদাবাদ বিমানবন্দর থেকেসবরমতী আশ্রমে যাওয়ার পথে নগরবাসীরা বিপুল ও ব্যাপকভাবে অভ্যর্থনা জানাবেন মিস্টারএবং মিসেস নেতানিয়াহু-কে। একটিস্টার্ট-আপ প্রদর্শনীও পরিদর্শন করবেন তাঁরা ; আলাপচারিতায়মিলিত হবেন স্টার্ট-আপ সংস্হাগুলির সিইও এবং উদ্ভাবন প্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদেরসঙ্গে। একটি ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে বনসকান্তা জেলার সুইগাম তালুকে জল লবণমুক্তকরার একটি চলমান গাড়ি-ও এদিন জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন দুই প্রধানমন্ত্রী। একজনসমাবেশেও ভাষণ দেবেন তাঁরা। গুজরাটের সবরকান্তা জেলায় শাক-সব্জিরএকটি উৎকর্ষ কেন্দ্র পরিদর্শনের কর্মসূচিও রয়েছে মিস্টার নেতানিয়াহু এবং শ্রীমোদীর। কেন্দ্রটির কর্মপরিকল্পনা সম্পর্কেও অবহিত করা হবে তাঁদের দু ’ জনকে। কচ্ছ জেলার কুকামা-তেখেজুর উৎপাদন সম্পর্কিত একটি উৎকর্ষ কেন্দ্রেরও আনুষ্ঠানিক সুচনা করবেন দুইপ্রধানমন্ত্রী। সেখানে তাঁরা আলাপচারিতায় মিলিত হবেন কৃষকদের সঙ্গেও। একই সঙ্গে, এই ক্ষেত্রগুলিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এবছর জুন মাসে অনুষ্ঠিত শীর্ষ বৈঠকে মার্কিনপ্রেসিডেন্ট ওবামার সঙ্গে তাঁর আলোচনায় গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির সফল রূপায়ণ ওঅগ্রগতির ব্যাপারে তিনি বিশেষ আশাবাদী বলে দুই মার্কিন সচিবকে জানান শ্রী নরেন্দ্রমোদী। মানবতাবাদী শক্তিগুলির উচিৎ একজোট হয়ে এই ধরণের সন্ত্রাসের মোকাবিলায় এখনই এগিয়ে আসা। হামলার ঘটনায় যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের পরিবার-পরিজনদের সমবেদনা জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদের এত বড় হুমকি সত্ত্বেও তার যথোচিত জবাব বিশ্ব এখনও দিয়ে উঠতে পারেনি। ভারত কখনই সন্ত্রাসের কাছে নতি স্বীকার করবে না বলে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সন্ত্রাসের থেকে ধর্মকে পৃথক ও বিচ্ছিন্ন করতে বিশ্ব নেতৃবৃন্দের সঙ্গে তিনি ইতিমধ্যেই একাধিকবার কথা বলেছেন। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব সুফি সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উদার ইসলামি বিদগ্ধজন সন্ত্রাসকে কখনই সমর্থন করেন না। সন্ত্রাস ও উগ্রপন্থা দমন করার লক্ষ্যে এই ধরণের দৃষ্টিভঙ্গী একান্ত জরুরি। কিন্তু, কোনও প্রতিষ্ঠান যদি উদ্ভূত পরিস্থিতির মোকাবিলায় ব্যর্থ হয় তা হলে তার অস্তিত্ব অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। মনে রাখতে হবে, ভারত যে এখন দ্রুততম গতিতে গড়ে ওঠা বিশ্বের এক বৃহৎ অর্থনীতির চেহারা নিয়েছে তা কিন্তু দৈববশে সম্ভব হয়নি। পর পর দুটি বছর খরা কবলিত হওয়া সত্ত্বেও ভারত এই সাফল্যের নজির রেখেছে। সদিচ্ছা ও বলিষ্ঠ নীতিই তার কারণ বলে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৫ সালটির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার ঐ বছরে যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, সে সম্পর্কে দু-একটি কথা তিনি এই প্রসঙ্গে তুলে ধরতে ইচ্ছুক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পেট্রোলের সঙ্গে ইথানলের মিশ্রণ, উৎপাদন বৃদ্ধির মাধ্যমে ইউরিয়ার ঘাটতি হ্রাস এবং নিম কোটিং-এর মাধ্যমে কৃষি সার উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারত বিশেষ সাফল্য দেখিয়েছে। এই বিষয়টিতে কেন্দ্রীয় বাজেটে যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছিল তারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, কয়লা ও বিদ্যুতের সর্বোচ্চ উৎপাদন সম্ভব হয়েছে ২০১৫ সালটিতেই। ২০১৫ সালে মোটরগাড়ি উৎপাদন এবং সফটওয়্যার রপ্তানির পরিমাণ হয়েছে সবচেয়ে বেশি। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে জানান, আর্থিক অন্তর্ভুক্তির একটি প্রচেষ্টা হিসেবে ২১ কোটি নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে ভারতে। ‘জনধন আধার মোবাইল’ (জ্যাম)-এর সাহায্যে রান্নার গ্যাসে ভর্তুকি দানের ক্ষেত্রে দুর্নীতি ও যাবতীয় ফাঁকফোকর বন্ধ করা গেছে। সশস্ত্র বাহিনীর জন্য ‘এক পদ এক পেনশন’ নীতি চালু করার যে অঙ্গীকার তিনি করেছিলেন তাও পূরণ করা সম্ভব হয়েছে। ডাক দপ্তরে কর্মরত গ্রামীণ ডাক সেবকদের পারিশ্রমিকের কাঠামো ও ভাতা সংশোধনের একটি প্রস্তাব আজ অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রশাসনের বিভিন্ন এলাকায় রূপান্তর আনতে সচিবদের মতামত আহ্বান করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কাবুলে সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা করেছেন। ঐ হামলায় নিরীহমানুষের প্রাণহানির খব্রে তিনি শোক জ্ঞাপন করেন। এক বার্তায় তিনি বলেন, “কাবুলে সন্ত্রাসবাদী হামলার তীব্র নিন্দা করি এবং নিরীহ মানুষের প্রাণহানির খবরে শোকজ্ঞাপন করছি। উভয়ের মধ্যে এই আলোচনায় অন্যান্য বিষয়ের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির অগ্রণী ক্ষেত্রে যৌথ গবেষণা ও উন্নয়ন, ভারতে নির্মান শিল্প স্থাপনে সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর বিনিয়োগ এবং তৃতীয় কোন দেশে সহযোগিতার ক্ষেত্রকে শক্তিশালী করা ইত্যাদি সহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্ভাবনার বিভিন্ন বিষয়ও উঠে আসে| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শুক্রবার বিল এন্ড মিলান্দা গেটস ফাউন্ডেশনের কো-চেয়ার এবং ট্রাস্টি মিস্টার বিল গেটস সাক্ষাৎ করেন। তাঁদের মধ্যে পরিচ্ছন্ন শক্তি উদ্যোগ, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ, স্বাস্থ্য বিধান, স্বাস্থ্য এবং পুষ্টি সংক্রান্ত বিষয়াবলী নিয়ে আলোচনা করেন। মিস্টার বিল গেটস ভারতে পুনর্নবীকরণ শক্তি ক্ষেত্রে যেসব কাজ হয়েছে সেই কথা প্রশংসার সঙ্গে উল্লেখ করেন এবং হাইড্রোকার্বনের স্তরের পরিপ্রেক্ষিতে পরিচ্ছন্ন শক্তি উৎপাদনের খরচ কমানোর উপর জোর দেন। সারা দেশে বর্তমান ডাক ব্যবস্থার পরিকাঠামোকে গতিশীল করে হাইব্রিড পেমেন্ট ব্যাংক সৃষ্টির প্রসঙ্গ নিয়েও অলোচনা করা হয়। স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে আলোচনা করতে গিয়ে মিস্টার গেটস যেসব কাজ করা হয়েছে সেগুলির সবিশেষ প্রশংসা করেন, বিশেষত: নতুন টীকা চালু করার প্রসঙ্গটিরও প্রশংসা করেন তিনি। নির্বাচনীপ্রচারের সময়ে ভারতের প্রতি যে মৈত্রীপূর্ণ আচরণ আপনি দেখিয়েছেন, আমরা তার বিশেষপ্রশংসা করি। বেলজিয়াম, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং সৌদি আরবের উদ্দেশে রওয়ানা হওয়ার প্রাক্কালে প্রদত্ত এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বলেছেন, বেলজিয়ামের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের মূল রয়েছে অনেক গভীরে এবং কালের পরীক্ষায় তা উত্তীর্ণও। ইউরোপীয় ইউনিয়নের সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বেলজিয়াম আমাদের দ্বিতীয় বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। ঐ দেশের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আমার বৈঠকের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং উচ্চ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া। প্রধানমন্ত্রী চার্লস মিশেলের সঙ্গে আমি যুগ্মভাবে ভারত-বেলজিয়াম ‘ARIES’ (আর্যভট্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউট ফর অবজারভেশনাল সায়েন্সেস) টেলিস্কোপটি দূরসংবেদী ব্যবস্থায় চালু করব। ইউরোপীয় ইউনিয়ন ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক অংশীদার এবং রপ্তানি বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এক বৃহত্তমগন্তব্যস্থল। শীর্ষ বৈঠক তাই আমাদের বহুধা বিস্তৃত কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রটিকে আরও প্রসারিত করে তুলবে। বেলজিয়ামে হীরে ব্যবসায়ীদের সংগঠনের বোর্ড সদস্যদের সঙ্গেও মত বিনিময়ের বৈঠকে উপস্থিত থাকব আমি। শীর্ষ বৈঠকের পাশাপাশি, আমি মিলিত হব বিশ্বের কয়েকটি দেশের নেতাদের সঙ্গে যাতে ঐ দেশগুলির সঙ্গে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার কর্মসূচিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়। LIGO প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত বিজ্ঞানীদের সঙ্গে মত বিনিময়ের সুযোগও আমি লাভ করব বলে আশাবাদী। ২ এবং ৩ এপ্রিল মহামান্য রাজা সলমন বিন আব্দুলাজিজ আল সৌদ-এর আমন্ত্রণে আমি সফর করব সৌদি আরব। সৌদি আরবের সঙ্গে ভারত এক বিশেষ সম্পর্কে আবদ্ধ রয়েছে। দু’দেশের জনগণের মধ্যে গভীর ও বলিষ্ঠ সম্পর্কওঅন্তর্ভুক্ত আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার মধ্যে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও সম্প্রসারিত করার লক্ষ্যে সৌদি আরবের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে মিলিতভাবে কাজ করে যাওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে আমার। আঞ্চলিক পরিস্থিতির পর্যালোচনার বিষয়টিও রয়েছে আমাদের কর্মসূচিতে। ভারতের উন্নয়ন প্রচেষ্টার অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্রগুলিতে সৌদি আরব আমাদের এক বিশেষ বাণিজ্যিক অংশীদার হয়ে উঠুক এটাই আমাদের ইচ্ছা। রিয়াধে যে বাণিজ্যিক আলোচনার পরিকল্পনা রয়েছে তার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল তাই। অর্থনৈতিকভাবে সমৃদ্ধ প্রধান প্রধান দেশগুলোর অর্থনীতির মন্দা দশা, আর্থিক বাজারে নিরন্তর ওঠা-নামা, ও মুদ্রার প্রতিযোগিতামূলক অবমূল্যায়নের ফলে বিশ্বের আর্থিক প্রবৃদ্ধি এখনও দুর্বল হয়ে রয়েছে| জি-টুয়েন্টি’র উদ্যোগকে এবছরে গৃহীত রাষ্ট্রসংঘ সুস্থায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যের সঙ্গে, বিশেষ করে ২০৩০ সালের মধ্যে দারিদ্র্য দূরীকরণের যে লক্ষ্যগুলি নেওয়া হয়েছে, এগুলির সঙ্গে সাযুজ্য রাখতে হবে| নারীদের কর্মসংস্থান ও যুব সমাজের জন্য নেওয়া জি-টুয়েন্টির লক্ষ্যকে আমরা স্বাগত জানাই| আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, মৌলিক চাহিদাগুলি সবার জন্য নির্দিষ্ট বছরের মধ্যে সহজলভ্য করা, মেক ইন ইন্ডিয়া, দক্ষ ভারত, ডিজিট্যাল ভারত, শিল্প করিডোর ও স্মার্ট সিটি প্রজেক্ট সহ সার্বিক উন্নয়নে আমাদের কর্মসূচি ভারতে প্রবৃদ্ধি ও কর্মসংস্থানকে জোরদার করবে| আর তা বিশ্বের অর্থ-ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার উৎস হয়ে উঠবে| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার আফ্রিকা থেকে আগত বানিজ্য মন্ত্রীদের সাথে খোলামেলা অনানুষ্ঠানিক কথা বলেন | আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের বানিজ্য মন্ত্রীরা বর্তমানে দিল্লিতে রয়েছেন | তাঁরা এখানে অনুষ্ঠিত চতুর্থ ভারত-আফ্রিকা বানিজ্য মন্ত্রীদের বৈঠকে যোগ দিয়েছেন | এখন থেকে বাজেটেরওপর পূর্ণাঙ্গ আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে এবং আমি নিশ্চিত যে আলোচনা ও বিতর্কের মান হবে যথেষ্টউন্নত। দরিদ্র মানুষের কল্যাণ সম্পর্কিত বিষয়গুলির ওপর আলোচনাই এখন বিশেষপ্রাধান্য লাভ করবে। পণ্য ও পরিষেবা কর (জি এস টি)-র বিষয়টিতেও আমরা বিশেষভাবেআশাবাদী। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে এই বিষয়টির ওপর বিস্তারিতআলোচনার পর আমরা সহমতের ভিত্তিতে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছিলাম।তা অনুসরণ করেই আমরা আরও এগিয়ে যেতে পেরেছি। পণ্য ও পরিষেবা করের বিষয়টি যাতেসংসদের বর্তমান অধিবেশনেই যথাযথ গুরুত্ব পায়, সেজন্য সকলের সহযোগিতা ও সমর্থনলাভের জন্য আমরা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আপনাদের সকলকেই আমি আরও একবার বিশেষভাবেধন্যবাদ জানাতে চাই। এই কাজের জন্য মোট ১৪৮৩২ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হবে। কেন্দ্রীয় ক্ষেত্রের এই কর্মসূচির লক্ষ্য হচ্ছে, দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রাপ্তিযোগ্যতার ক্ষেত্রে অসাম্যগুলি দূর করা এবং মেডিকেল শিক্ষার ক্ষেত্রে পিছিয়ে থাকা রাজ্যগুলিতে উচ্চ মানের মেডিকেল শিক্ষার ব্যবস্থা করা। কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগে এই ধরণের এইমস্‌ স্থাপনের জন্য সম্পূর্ণভাবে অর্থ ব্যয় করা হয়। এছাড়া, নতুন এইমস্‌গুলির কাজকর্ম চালানো এবং পরিচালনের ব্যয়ভারও পুরোপুরিভাবে কেন্দ্রীয় সরকার বহন করে থাকে। বিভিন্ন রাজ্যের নতুন এইমস্‌ স্থাপনের ফলে, এক একটি এই ধরণের কেন্দ্রে শিক্ষক ও অশিক্ষক কর্মী সহ বিভিন্ন ধরণের প্রায় ৩,০০০ কর্মসংস্থান হবে। এছাড়াও, পরোক্ষভাবে এইমস্‌গুলিকে ঘিরে শপিং সেন্টার, ক্যান্টিন এবং অন্যান্য পরিষেবার জন্য কর্মসংস্থান হবে। বর্তমান অর্থ বছরে দেওয়া হবে আরও ৬০০ কোটি টাকা। এক বার্তায় তিনি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেছেন। আহতদের সবরকমের সাহায্য দেওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের নির্দেশ দিয়েছেন। উত্তর প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের সঙ্গেও তাঁর কথাবার্তা হয়েছে পরিস্থিতি নিয়ে। নভরোজ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। আগামী বছরটি আরও সুখ ও সম্প্রীতি বহন করে নিয়েআসুক। আজ আসামের ডিব্রুগড়ে দুটি প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রকল্প দুটি হল – ব্রহ্মপুত্র ক্র্যাকার অ্যান্ড পলিমার লিমিটেড এবং নুমালিগড় রিফাইনারিজ লিমিটেড। প্রকল্প দুটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করার ফলে আসাম সহ সারা দেশে খুশি ও আনন্দের মেজাজ তিনি লক্ষ্য করছেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। নির্দিষ্ট সময়কালের মধ্যেই প্রকল্প দুটির কাজ সম্পূর্ণ হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এরফলে যেমন ব্যয়বাহুল্য কমানো গেছে, অন্যদিকে তেমনই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির বিষয়টিও ত্বরান্বিত হবে। তিনি বলেন, যুবসমাজের কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে দেশে দ্রুত শিল্পোন্নয়ন একান্তভাবে জরুরি। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ‘প্রগতি’ উদ্যোগের কথা তুলে ধরে বলেন, এই পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে থেমে থাকা প্রকল্পগুলিতে আবার গতি সঞ্চার হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সার্বিক উন্নয়নের স্বার্থে পূর্ব ভারতের বিকাশ ও উন্নয়ন খুবই জরুরি। পরিকাঠামো ও যোগাযোগের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে কেন্দ্রীয় সরকার উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে বিশেষভাবে যত্নবান হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। নয়াদিল্লি, ৬ এপ্রিল, ২০১৫ আজ সারা ভারতের বিভিন্ন স্থান থেকে মুসলমান সম্প্রদায়ের বরিষ্ঠ নেতারা প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে প্রধানমন্ত্রীর কাছে তাঁদের ভাবনাচিন্তার বিষয়গুলি প্রকাশ করেন। মুসলমান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় স্থান, মসজিদ ও মাদ্রাসার সম্পত্তিগুলির বিষয়ে প্রতিনিধিদল প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করেন। মুসলমান যুব সম্প্রদায়কে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আরও ভালো সুযোগ দেওয়া, বিশেষ করে শিক্ষা ক্ষেত্রের সুযোগসুবিধা প্রদানের বিষয়ে নেতারা সরকারের সহায়তা চেয়েছেন। মুসলমান যুব সম্প্রদায়কে ক্ষমতাদান করার বিষয়টির ওপর শ্রী মোদী গুরুত্ব আরোপ করেন যাতে তারা দেশ গঠনে বড় ভূমিকা পালন করতে পারেন। বিশেষভাবে ধর্মীয় স্থান, মসজিদ ও মাদ্রাসাগুলির বিষয়ে অভিযোগগুলি খতিয়ে দেখার আশ্বাসও দেন প্রধানমন্ত্রী। মুসলমানদের সামাজিক অবস্থানে উন্নতিসাধন ও তাঁদের শিক্ষাগত প্রয়োজনীয়তা মেটানোর জন্য পূর্ণ সহায়তার আশ্বাস শ্রী মোদী দেন। দ্রুত অর্থনৈতিক বিকাশ, সাম্প্রদায়িক শান্তি ও সংহতির প্রসার এবং জাতীয় নিরাপত্তা সুদৃঢ় করার উদ্দেশ্যগুলি সফল করতে প্রধানমন্ত্রীকে মুসলমান সম্প্রদায়ের সম্পূর্ণ সহযোগিতার কথা নেতারা পুনরায় উল্লেখ করেন। ন্যাশনাল টেক্সটাইল কর্পোরেশন লিমিটেডের (এনটিসিএল) ‘ ইন্দু-৬ ’ মিলের ১২ একর জমিমহারাষ্ট্র সরকারকে হস্তান্তরের শর্ত সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব বুধবার অনুমোদিত হলকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ৩০ নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে প্যারিসে অনুষ্ঠিত ২১তমবিশ্ব জলবায়ু বৈঠকের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার সূচনা করেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার আওতায় সৌরশক্তি সমৃদ্ধ ২১টি দেশের মধ্যে সৌরজ্বালানি সম্পর্কে গবেষণা ও ব্যয়সাশ্রয়ী প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে পারস্পরিকসহযোগিতা গড়ে তোলার চেষ্টা করা হবে। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার সদর দপ্তর স্থাপনেরসিদ্ধান্ত নেওয়া হয় হরিয়ানার গুরগাঁও-এর গোয়াল পাহাড়িতে। এই কর্মসূচিকে চালু করারলক্ষ্যে পূর্ণ সমর্থন ও প্রতিশ্রুতির কথা ইতিমধ্যেই ব্যক্ত করেছে ভারত। লোকসভায় রাষ্ট্রপতির অভিভাষণের প্রেক্ষিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ তাঁর জবাবি ভাষণ দেন। সাংসদদের তিনি তর্ক-বিতর্কে অংশ নিয়ে এক আলাদা মাত্রা যোগ করা এবং তাঁদের সুচিন্তিত মতামত পেশ করার জন্য ধন্যবাদ দেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকারের উদ্দেশ্যের কথা উল্লেখ করে বলেন, তাঁর সরকার ভারতের সাধারণ মানুষের স্বার্থে কাজ করছে, মানুষের আশা-আকাঙ্খার প্রতি সংবেদনশীল, সৎ, স্বচ্ছ, দুর্নীতি বিরোধী এবং দ্রুত গতিতে উন্নয়নের পক্ষপাতি। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ভারতে বিগত চার বছরে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি হয়েছে। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ থেকে ইস্পাত ক্ষেত্র, স্টার্ট আপ, দুগ্ধ ও কৃষি, বিমান পরিবহণ – প্রায় সব ক্ষেত্রেই ভারতের অগ্রগতি ছিল লক্ষ্যণীয়। ‘আমরা এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম ইস্পাত উৎপাদনকারী, দ্বিতীয় বৃহত্তম মোবাইল ফোন নির্মাতা, বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম মোটরগাড়ি নির্মাতা হয়ে উঠেছি। আমরা এখন বিপুল পরিমাণে শস্য উৎপাদনকারী দেশেও পরিণত হয়েছি। বিগত ৫৫ বছরে ১২ কোটি রান্নার গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছিল। যে গতিতে কাজ হয়েছে এবং কাদের স্বার্থে এই কাজ করা হয়েছে, তা আপনারাই ঠিক করুন। বিরোধীদের প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, এক সংখ্যাগরিষ্ঠ সরকার কি কাজ করতে পারে, তা মানুষ দেখেছেন। তাঁরা ‘মহামিলাবট’ বা ভেজাল সরকার চান না, এমনকি এই সরকার সফলও হবে না। শ্রী মোদী বলেন, যে কেউ তাঁর সম্বন্ধে খোলাখুলি সমালোচনা করতে পারেন, কিন্তু সমালোচনার সময়ে দেশের স্বার্থের কথাও মনে রাখতে হবে। দুর্নীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দুর্নীতিগ্রস্থ মানুষকে আইনের আওতায় নিয়ে আসতে তাঁর সরকার নিরন্তর কাজ করে চলেছে। অনুৎপাদক সম্পদ সম্পর্কে শ্রী মোদী বিগত সরকারকে দায়ী করে বলেন, এই পরম্পরা তাঁদেরই সৃষ্ট। যারা দেশ ছেড়েছে, তারা এখন হিসাবে ট্যুইটারে কান্নাকাটি করছে। ‘এদের বক্তব্য আমি ৭ হাজার ৮০০ কোটি টাকা নিয়েছি, কিন্তু সরকার আমার ১৩ হাজার কোটি টাকার সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করেছে’। এক স্বাস্থ্যকর ভারত গড়ে তুলতে তাঁর অঙ্গীকারের পুনরায় ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওষুধপত্রের পাশাপাশি, চিকিৎসা পরিষেবা এবং অস্ত্রোপচারের খরচ কমানো হয়েছে। কর্মসংস্থান প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, পরিবহণ ক্ষেত্রে সর্বাধিক কাজের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে। তিনি লোকসভাকে আরও জানান, জাতীয় পেনশন ব্যবস্থার আওতায় ১ কোটি ২০ লক্ষেরও বেশি মানুষ অন্তর্ভুক্ত হয়েছেন। ভারতের বৈদেশিক নীতি ভারত’কে বিশ্ব আঙিনার সম্মুখভাগে নিয়ে এসেছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের বক্তব্য কি, তা মানুষ শুনেছেন। তিনি জানান, প্যারিস চুক্তি চূড়ান্ত হওয়ার আগেও বিশ্বের ক্ষমতাবান নেতারা ভারতকে নিয়ে আলোচনা করতেন। ইজরায়েল ও প্যালেস্তাইনের পাশাপাশি, ভারত সৌদি আরব ও ইরানেরও বন্ধু হয়ে উঠতে চায় বলে প্রধানমন্ত্রী স্পষ্ট করে দেন। আজ মনে হচ্ছে শুধুভাষণের দিন। একটু আগেই আমরা শুনলাম প্রেসিডেন্ট জি এবং প্রধানমন্ত্রী মে-রবক্তব্য। এখন বলতে উঠেছি আমি। দ্বিতীয় রাইসিনাসম্মেলনের অধিবেশনের সূচনা পর্বে কিছু বক্তব্য পেশের সুযোগ পেয়েছি আমি। মাননীয়কারজাই, প্রধানমন্ত্রী হারপার, প্রধানমন্ত্রী কেভিন রুড – আপনাদের সকলকে দিল্লিতেউপস্থিত থাকতে দেখে আমি বিশেষভাবে আনন্দিত। সেইসঙ্গে, আমি আন্তরিকভাবে স্বাগতজানাই সমস্ত অতিথিদেরই। পরবর্তী কয়েকটি দিনে আমাদের চারপাশের বহির্বিশ্ব সম্পর্কেঅনেক রকম আলোচনা শোনার সুযোগ হবে আপনাদের। এই পার্থিব জগতের নিশ্চয়তা ও বর্তমানসমস্যা, সংঘাত ও ঝুঁকি, সাফল্য ও সুযোগ, অতীতের আচার-আচরণ এবং ভবিষ্যতের সম্ভাব্যদিক এবং সেইসঙ্গে সম্ভাবনাময় ব্ল্যাক সোয়ানস্‌ এবং নিউ নরম্যালস্‌-এর ওপর আলোকপাতকরা হবে নানাভাবে। ২০১৪-র মে মাসেভারতের জনসাধারণ এক নিউ নরম্যাল-এর উদ্ভব বা আবির্ভাবের সাক্ষী থেকেছেন । ভারতবাসী একবাক্যে পরিবর্তনের পক্ষে ভোট দিয়েআস্থা স্থাপন করেছেন আমার সরকারের ওপর। এই পরিবর্তন শুধুমাত্র দৃষ্টিভঙ্গিরই নয়,মানসিকতারও। কর্মহীনতা থেকে এক সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ারলক্ষ্যেই এই পরিবর্তন। পরিবর্তন বলিষ্ঠ সিদ্ধান্ত গ্রহণের লক্ষ্যেও। নাগরিকদের এইআস্থা ও বিশ্বাসের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্কারসাধন প্রচেষ্টাই যথেষ্ট নয় যদি না তাআমাদের অর্থনীতি তথা সমাজ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এক রূপান্তর সম্ভব করে তোলে। প্রতিদিনের কাজকর্মে আমি নতুন করে উৎসাহ ও উদ্দীপনা খুঁজে পাই এর মধ্যথেকেই। প্রতিদিনের জন্য আমি যে ‘কাজের তালিকা’ স্থির করি তার লক্ষ্যই হল ভারতেরসংস্কার তথা রূপান্তর, ভারতবাসীর সমৃদ্ধি তথা নিরাপত্তা নিশ্চিত করার লক্ষ্যে অনলসপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। ভারতের এই রূপান্তরপ্রচেষ্টা যে বহির্বিশ্বের প্রেক্ষিতকে বাদ দিয়ে সফল হতে পারে না সে সম্পর্কে আমিসজাগ। একইভাবে, ভারতের উন্নয়ন প্রচেষ্টা ছাড়া যেবিশ্বের অগ্রগতিও সম্ভব নয়, একথাও সমান সত্য। ভারত যেমন সমগ্রবিশ্বের বিকাশ তথা উন্নয়নকে সম্ভব করে তুলতে চায়, একইভাবে বহির্বিশ্বও ভারতেরবিকাশ ও অগ্রগতির প্রত্যাশী। দেশের রূপান্তরের লক্ষ্যে আমাদের আগ্রহের সঙ্গে একঅদৃশ্য যোগ রয়েছে বহির্বিশ্বের। দেশে উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমাদের পছন্দের বিষয়গুলিরসঙ্গে এক নিবিড় যোগ রয়েছে আন্তর্জাতিক অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলির। এ সমস্ত কিছুরমিলন ও সমন্বয়ই বাস্তবায়িত করতে পারে আমাদের রূপান্তরের লক্ষ্য ও আদর্শকে। এর কারণ হল, বহুজাতিরই যে ক্রম উত্থান তা বাস্তবতারই এক প্রতিফলন মাত্র । বহু দেশের মতামতকেই সম্মান জানানো হয়েছে তাতে।শুধুমাত্র কয়েকজনের মত ও দৃষ্টিভঙ্গিকে আশ্রয় করে গড়ে ওঠেনি বর্তমান বিশ্বেরকার্যসূচি। কৌশলগত দিক থেকেআমরা বর্তমানে রয়েছি এক জটিল পরিবেশের মধ্যে। ইতিহাসের দ্রুত পট পরিবর্তনেরপরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতি তাই নতুন কোন ঘটনা নয়। যে প্রশ্নটিসর্বাপেক্ষা বেশি গুরুত্বপূর্ণ তা হল এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন রাষ্ট্রের করণীয় কিহতে পারে। আমাদের জাতীয় শক্তির ওপরই দাঁড়িয়ে রয়েছে আমাদের পছন্দ-অপছন্দ এবংকর্মসূচি স্থির করার বিষয়গুলি। কৌশলগত দিক থেকেআমাদের আগ্রহ ও উদ্দেশ্যের মূলে রয়েছে আমাদের সভ্যতার ঐতিহ্যের মূলমন্ত্রগুলি : দেশ-বিদেশে ভারতীয়দের সমৃদ্ধি এবং নাগরিকদেরনিরাপত্তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়। কিন্তু ব্যক্তি স্বার্থ বলে কোন কিছুরঅস্তিত্ব নেই আমাদের সংস্কৃতি বা আচার-আচরণে। আমাদের আশা-আকাঙ্ক্ষা ওকর্মপ্রচেষ্টা, ক্ষমতা ও মানব মূলধন, গণতন্ত্র ও জনগোষ্ঠী, শক্তি ও সাফল্য আঞ্চলিকতথা বিশ্ব পর্যায়ে সার্বিক অগ্রগতির বিষয়টিকে সমর্থন যুগিয়ে যাবে। অর্থনৈতিক তথারাজনৈতিক পর্যায়ে আমাদের যে উত্থান তা আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক দিক থেকে এক বিশেষসুযোগ ও তাৎপর্যকেই চিহ্নিত করে। সামগ্রিকভাবে তা হল শান্তি সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যেএক বিশেষ শক্তি, স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ অনুঘটক এবং আঞ্চলিক তথাবিশ্ব সমৃদ্ধির ক্ষেত্রে এক বিশেষ চালিকাশক্তি। আমার সরকার মনেকরে, এর মূল লক্ষ্য হল আন্তর্জাতিক সমঝোতার পথকে সুপ্রশস্ত করা যার মধ্যেবিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হবে এই বিষয়গুলির ওপর : · সংযোগ ও যোগাযোগের পুনর্বিন্যাস, আমাদের প্রতিবেশীতথা দূরের দেশ ও জনগণের সঙ্গে ভারতের সম্পর্কের সেতুবন্ধন রচনা; · ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রাধিকারগুলির সঙ্গে সাযুজ্যরেখে বিভিন্ন দেশের সঙ্গে সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন; · ভারতের মানবসম্পদকে এক বিশেষ শক্তির উৎস রূপে তুলেধরা যাতে আমাদের মেধাবী ও বুদ্ধিদীপ্ত তরুণরা আন্তর্জাতিক চাহিদা মেটানোর পাশাপাশিবিভিন্ন সুযোগেরও সদ্ব্যবহার করতে পারে; · উন্নয়নের লক্ষ্যে এমন এক অংশীদারিত্বের সম্পর্কগড়ে তোলা যার প্রসার ও বিস্তার ঘটবে ভারত ও প্রশান্ত মহাসাগর থেকে ক্যারিবিয়ানদ্বীপপুঞ্জ পর্যন্ত এবং অন্যদিকে আফ্রিকা মহাদেশ থেকে আমেরিকা পর্যন্ত।আন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা সম্পর্কে ভারতের মত ও চিন্তাভাবনাকে তুলেধরতে হবে আমাদের; কয়েকটি পর্যায়, ভিন্ন ভিন্ন বিষয় এবং বিভিন্ন ভৌগোলিক অবস্থানঘিরে ঘটতে চলেছে তার উজ্জ্বল আত্মপ্রকাশ। ভৌগোলিক দিক থেকেএবং মিলিত স্বার্থের নিরিখে যাঁরা রয়েছেন আমাদের খুব কাছে, তাঁদের সম্পর্কে এবারকিছু বলা যাক। ‘প্রতিবেশীই প্রথম’ – এই ধারণাটিকে আমাদের সঙ্কল্পবদ্ধ দৃষ্টিভঙ্গিও চিন্তাভাবনার মধ্যে আমরা এক বিশেষ স্থান করে দিয়েছি। দক্ষিণ এশিয়ার জনসাধারণেরসঙ্গে রয়েছে আমাদের রক্তের সম্পর্ক; ইতিহাস, সংস্কৃতি এবং আশা-আকাঙ্ক্ষার দিক থেকেএক মিলিত ঐতিহাসিক সাক্ষ্য আমরা বহন করে থাকি সেখানকার অধিবাসীদের সঙ্গে। এইঅঞ্চলের তরুণ ও যুবকরা উৎসাহী ও আগ্রহী পরিবর্তন, সুযোগ, প্রগতি ও সমৃদ্ধিসম্পর্কে। প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে নিবিড় যোগাযোগ স্থাপন আমার এক বিশেষ স্বপ্নবলতে পারেন। গত আড়াই বছরে আমাদের এই অঞ্চলকে পরস্পরের আরও কাছে নিয়ে আসার লক্ষ্যেপ্রায় সবক’টি প্রতিবেশী রাষ্ট্রের সঙ্গেই নিবিড় সংযোগ গড়ে তুলেছি আমরা। প্রয়োজনেআমাদের অতীতের যাবতীয় বোঝাকে দূরে নিক্ষেপ করে এই অঞ্চলের ভবিষ্যৎ অগ্রগতিকে আমরানিশ্চিত করে তুলতে চেয়েছি । আমাদের এইপ্রচেষ্টার সুফলগুলি আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন। দূরত্ব কিংবাযোগাযোগ ব্যবস্থার অপ্রতুলতা কখনই বাধা হয়ে দাঁড়ায়নি আফগানিস্তানের সঙ্গে আমাদেরসম্পর্ক গড়ে তোলার ক্ষেত্রে। পুনর্গঠন, ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি ইত্যাদির ক্ষেত্রেসহযোগিতার প্রসারের মাধ্যমে আমরা নিবিড় করে তুলেছি আমাদের অংশীদারিত্বেরসম্পর্ককে। আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্যে অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে যে কোনরকম খাদ নেই তারএক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হল আফগানিস্তানের সংসদ ভবন নির্মাণ এবং ভারত-আফগানিস্তানমৈত্রী বাঁধ – এই দুটি ঘটনা । অন্যদিকে, নেপাল,শ্রীলঙ্কা, ভুটান ও মালদ্বীপের সঙ্গে পরিকাঠামো, যোগাযোগ, জ্বালানি ও উন্নয়নপ্রকল্পে আমাদের সার্বিক কর্মপ্রচেষ্টা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে অগ্রগতি ও স্থিতিশীলতার একবিশেষ শক্তি হয়ে দাঁড়িয়েছে। প্রতিবেশী দেশগুলিরসম্পর্কে আমাদের চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গি সমগ্র দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে শান্তি ওসম্প্রীতি গড়ে তোলার কাজে বিশেষ সাফল্য এনে দিয়েছে। আমাদের এই বিশেষ চিন্তাভাবনাইপাকিস্তান সহ সার্কভুক্ত সবক’টি দেশের নেতাদের আমন্ত্রণ জানিয়ে নিয়ে এসেছে আমারশপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে। এই চিন্তাভাবনাকে সঙ্গে নিয়েই আমি নিজে উপস্থিত থেকেছিলাহোরে। কিন্তু শান্তির পথ নিশ্চিত করা ভারতের একার পক্ষে সম্ভব নয়। পাকিস্তানকেওসেজন্য বাড়িয়ে দিতে হবে সহযোগিতার হাত। ভারতের সঙ্গে আলোচনা-বৈঠকে মিলিত হওয়ারলক্ষ্যে সন্ত্রাসের পথ পরিহার করতে হবে পাকিস্তানকে। সাংহাই সহযোগিতা সংগঠনের সদস্য পদে অন্তর্ভুক্তি মধ্য এশিয়াররাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কর্মপ্রচেষ্টার এক প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্ক গড়ে তোলার কাজেবিশেষভাবে সাহায্য করেছে আমাদের । মধ্য এশিয়ারভাই-বোনেদের সকলরকম সমৃদ্ধির লক্ষ্যেও বিনিয়োগ করেছি আমরা। পূর্বএশিয়া শীর্ষ সম্মেলন সহ সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের প্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামো গড়ে তোলারলক্ষ্যে এক বিশেষ কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়েছি আমরা। আসিয়ান রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আমাদেরঅংশীদারিত্বের সম্পর্ক এই অঞ্চলে প্রযুক্তি, বিনিয়োগ, উন্নয়ন ও নিরাপত্তার মতোবিষয়গুলিতে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের পুনর্বিন্যাস ঘটিয়েছে। শুধু তাই নয়, এর ফলেসংশ্লিষ্ট অঞ্চলে আমাদের কৌশলগত বিশেষ স্বার্থ ও স্থিতিশীলতার বিষয়টিও অনেক দূরএগিয়ে গেছে। তবে, দুটি বড় প্রতিবেশীশক্তির মধ্যে যে কোন মতপার্থক্য থাকবে না তা কখনই বলা চলে না। জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাথেকেই আমরা অনুভব করেছি যে বর্তমান শতক হল এশিয়ার শতক। সতত নানা পরিবর্তন ঘটেচলেছে এশিয়া মহাদেশে। একের পর এক বিকাশ, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির উজ্জ্বল দৃষ্টান্তস্থাপিত হচ্ছে সর্বত্র যা এই অঞ্চলের গণ্ডি অতিক্রম করে পরিব্যপ্ত হয়েছেবহির্মহাদেশেও। গত আড়াই বছরেমার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, রাশিয়া, জাপান এবং অন্যান্য প্রধান প্রধান বিশ্বশক্তিরসঙ্গে আমাদের যোগাযোগ ও কর্মব্যস্ততাকে আমরা বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছি। তাদের সঙ্গেশুধুমাত্র সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলতেই আমরা আগ্রহী নই। একইসঙ্গে, বিভিন্নচ্যালেঞ্জের মোকাবিলা এবং সুযোগ-সুবিধার সদ্ব্যবহার সম্পর্কেও আলোচনা ও মতবিনিময়েরমাধ্যমে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আমরা আগ্রহী। ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রাধিকার এবংপ্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাজনিত পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে এই অংশীদারিত্বের সম্পর্কগড়ে তোলা একান্ত জরুরি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রেএসেছে গতি, নতুন নতুন বিষয় ও বলিষ্ঠতা । নবনির্বাচিতপ্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে আমার আলোচনাকালে আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বেরএই বিশেষ বিশেষ দিকগুলির ওপর পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ককে নিবিড় করে তোলার লক্ষ্যেকাজ করে যাওয়ার প্রশ্নে আমরা উভয়েই সহমত পোষণ করেছি। রাশিয়া হল আমাদের এক অকৃত্রিমবন্ধু রাষ্ট্র। যে সমস্ত চ্যালেঞ্জ বর্তমান বিশ্বকে এক বিশেষ হুমকির মুখে ঠেলেদিয়েছে তার মোকাবিলায় সম্ভাব্য পদক্ষেপ সম্পর্কে আমি দীর্ঘ আলোচনা করেছিপ্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গেও। বিভিন্ন ক্ষেত্রে বিশেষত, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত বিষয়েআমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্ব গভীরতর হয়ে উঠেছে। আমাদের এই সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করে তোলার সঙ্কল্প গ্রহণকরেছি আমি এবং প্রধানমন্ত্রী আবে। অন্যদিকে, ইউরোপের দেশগুলির সঙ্গে ভারতের বিকাশেবিশেষত, আমাদের জ্ঞান-নির্ভর শিল্প প্রচেষ্টা এবং স্মার্ট নগরী প্রকল্পে এক ঘনিষ্ঠসহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তোলার চিন্তাভাবনা রয়েছে আমাদের। বহু দশক ধরেইবিকাশশীল দেশগুলির সঙ্গে ক্ষমতা, দক্ষতা ও শক্তি বিনিময় কর্মসূচির মাধ্যমে যুক্তরয়েছে ভারত। আফ্রিকার ভাই-বোনদের সঙ্গে বিগত কয়েক বছরে আমাদের সম্পর্ক হয়ে উঠেছেআগের তুলনায় আরও বেশি নিবিড়। আমাদের বহু দশকের ঐতিহ্যগত মৈত্রী সম্পর্ক এবংঐতিহাসিক যোগাযোগকে কাজে লাগিয়ে উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক অর্থবহ সহযোগিতার বন্ধন রচনাকরেছি আমরা। আমাদের এই উন্নয়ন ও অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আজ ব্যাপ্ত হয়েছে সমগ্রবিশ্বেই । ইতিহাসের প্রায়সূচনাকাল থেকেই সামুদ্রিক জাতি রূপে পরিচিতি ঘটেছে ভারতের। নৌ-সহযোগিতার ক্ষেত্রেআমাদের স্বার্থ ও প্রকৌশলগুলি যথেষ্ট তাৎপর্যপূর্ণ। একইসঙ্গেআমরা বিশ্বাস করি যে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে শান্তি, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার বাতাবরণগড়ে তোলার প্রাথমিক দায়িত্ব হল আমাদের এবং সেইসঙ্গে এই অঞ্চলে অবস্থিত সবক’টিরাষ্ট্রেরই। কাউকে বাদ দিয়ে আমরা এগিয়ে যেতে চাই না। শান্তি, সমৃদ্ধিএবং অগ্রগতির জন্য আঞ্চলিক সংযোগ ও যোগাযোগের প্রয়োজনীয়তার বিষয়টি আমরা বিশেষভাবে অনুভবও উপলব্ধি করি। এই কারণে পশ্চিম ও মধ্য এশিয়া এবং এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের পূর্বদিকে সমস্তরকম বাধা-বিঘ্ন অতিক্রম করে আমরা পৌঁছে যেতে চাই আমাদের বন্ধুত্বের হাতপ্রসারিত করে। দেশের ঐতিহ্যেরপ্রতি আনুগত্য বজায় রেখে আন্তর্জাতিক পর্যায়েও আমাদের অঙ্গীকার পূরণে সঙ্কল্পবদ্ধরয়েছি আমরা। এমনকি বিপর্যয়ের মুহূর্তেও ত্রাণ সহায়তা নিয়ে বিভিন্ন অঞ্চলে আমরাপৌঁছে গিয়েছি। নেপালের ভূমিকম্প, ইয়েমেনের সঙ্কট এবং ফিজি ও মালদ্বীপেরসমস্যাগুলিতে মানবতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছি আমরা। আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তারক্ষার ক্ষেত্রেও কখনই আমরা আমাদের দায়িত্বকে এড়িয়ে যাইনি। উপকূলবর্তী অঞ্চলেপ্রহরা ও সতর্কতা, জলদস্যুতা রোধ, চোরাচালান এবং সংগঠিত অপরাধের বিরুদ্ধেসহযোগিতার মাত্রাকে আমরা ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে তুলতে পেরেছি। তার মোকাবিলাতেও আমরা পালন করেছি এক বিশেষ অগ্রণী ভূমিকা।পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি থেকে ১৭৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ আহরণের এক উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলককার্যসূচি রয়েছে আমাদের। আপনারা শুনলে খুশি হবেন যে এর শুভ সূচনাও ইতিমধ্যেইবাস্তবায়িত হয়েছে। প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতি রক্ষার মধ্য দিয়ে বসবাসের যে ঐতিহ্যরয়েছে আমাদের সভ্যতার ইতিহাসে, তা আমরা বিনিময় করতে আগ্রহী অন্যান্য দেশের সঙ্গেও।আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা গঠনের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন দেশের সঙ্গেসহযোগিতা গড়ে তুলেছি আমরা। সৌর শক্তিকে মানবকল্যাণে ব্যবহারের উদ্দেশ্যেই আমাদেরএই বিশেষ প্রচেষ্টা। ভারতীয় সভ্যতায় যে সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্যরয়েছে তা অন্যান্য দেশের আগ্রহকে আরও বাড়িয়ে তুলেছে। বর্তমান বিশ্বে যোগ, আয়ুর্বেদএবং বৌদ্ধ ধর্ম মানবজাতির এক মূল্যবান ঐতিহ্য বলেই মনে করা হয়। পরিশেষে, একটি কথারউল্লেখ না করে আমি পারছি না। সমাজবদ্ধ জীবহিসেবে ব্যক্তি বিশেষের প্রয়োজন নয়, বহু মানুষের চাহিদাকে আমরা সকল সময়েই গুরুত্বদিয়ে এসেছি। আমাদের রূপান্তরেরএই যাত্রা শুরু হয়েছে আমাদের নিজেদের দেশ থেকেই। আমাদের এই প্রচেষ্টায় বিশেষ শক্তিযুগিয়েছে বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের গঠনমূলক সহযোগিতার সম্পর্ক। আমাদের এই কর্মপ্রচেষ্টায় আপনারা, অর্থাৎআমাদের মিত্র রাষ্ট্রের প্রতিভূরা প্রত্যক্ষ করবেন শান্তি ও অগ্রগতি, সাফল্য ওসুস্থিতি এবং অন্তর্ভুক্তি ও সহযোগিতার এক উজ্জ্বল আলোকবর্তিকা। আপনাদের সকলকে অনেকঅনেক ধন্যবাদ। প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর জন্য ৫ বছর পর্যন্ত বার্ষিক ৫ লক্ষ টাকা করে অনুদান দেওয়া হবে। তারপর থেকে এই সংস্থাগুলি তাদের অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে অর্থে নিজেদের পরিচালনার ব্যবস্থা করবে বলে আশা করা হচ্ছে। ২০২১ সালের মধ্যে এই আইআইএম-গুলির ক্যাম্পাস ভবন নির্মাণের কাজ সম্পূর্ণ হবে। এরফলে, দেশের ২০টি আইআইএম-এর সবগুলির জন্যই স্থায়ী ক্যাম্পাসের ব্যবস্থা হবে। আমিভাবতাম, “আমরা কীভাবে এইসব মেধাবীদের ফিরিয়ে আনতে পারবো এবং সেইসঙ্গে সমগ্রঅর্থনৈতিক বিশ্বে নেতৃত্ব দিতে পারবো?” আমি২০১৩ সালের জুন মাসে একটি বই প্রকাশের অনুষ্ঠানে গিয়ে বম্বে স্টক এক্সচেঞ্জ অর্থাৎবি.এস.ই. বিশ্বের অন্যান্য যেকোনো প্রথম সারির আন্তর্জাতিক অর্থ কেন্দ্রেরসমতুল্য সুবিধা ও ব্যবস্থাপনা প্রদান করতে সক্ষম হবে| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ ভারতের নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রক এবং মোজাম্বিকের মধ্যে মউ স্বাক্ষরের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতার প্রসার ও উন্নয়নে এটি বিশেষ সহায়ক হয়ে উঠবে বলে আশা করা হচ্ছে। পরমাণু নিরাপত্তা শীর্ষ বৈঠকের পাশাপাশি শুক্রবার এক বৈঠকে মিলিত হলেন ভারত ও জাপানের দুই প্রধানমন্ত্রী। জাপানের সঙ্গে কৌশলগত এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের সূত্র ধরে দুই নেতার মধ্যে কথাবার্তা হয় বেশ হৃদ্য ও আন্তরিক পরিবেশে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী মিঃ অ্যাবে-র গত বছর ডিসেম্বরে ভারত সফরকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী তাঁকে যেভাবে সাদর অভ্যর্থনা জানান এবং তাঁর আপ্যায়নের ব্যবস্থা করেন সেজন্য শ্রী মোদীকে বিশেষ ধন্যবাদও জানান জাপানের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর বারাণসী সফরকে এক অবিস্মরণীয় অভিজ্ঞতা বলে বর্ণনা করেন মিঃ অ্যাবে। জাপানের প্রধানমন্ত্রী আরও স্বীকার করেন যে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর নেতৃত্বে ভারতীয় অর্থনীতি এখন বিশ্বের প্রগতি ও উন্নয়নের এক চালিকাশক্তি হয়ে উঠেছে। জাপানের প্রধানমন্ত্রীর ভারত সফরকালে পারস্পরিক সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের বিষয়ে যে সমস্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল, তার কথাও উঠে আসে দুই প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে শুক্রবারের আলোচনায়। প্রধানমন্ত্রী অ্যাবে জানান যে জাপানের এক সমীক্ষা মিশন আগামী মে মাসে ভারত সফরকরবে বারাণসীতে কনভেনশন সেন্টার প্রকল্প স্থাপনের কাজকর্মকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে। দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রসার সম্পর্কেও মত বিনিময় করেন দুই প্রধানমন্ত্রী। আন্তর্জাতিক রণতরী প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য জাপানের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এছাড়াও, বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক বিষয়েও কথাবার্তা বলেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আচার্য জে বি কৃপালিনী ও মৌলানা আবুল কালাম আজাদের জন্মবার্ষিকীতে তাঁদের শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেছেন। মন্ত্রিসভারএই অনুমোদনের ফলে জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) চালু করারক্ষেত্রে আর কোনরকম বাধা রইল না। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৭২তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। তাঁর ভাষণের বিশেষ বিশেষ অংশ এখানে তুলে ধরা হল: দেশ আজ আত্মবিশ্বাসে ভরপুর। এক নতুন শিখরে আরোহণের লক্ষ্য পূরণে কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে নতুন নতুন উচ্চতায় পৌঁছে যাচ্ছে আমাদের দেশ। আমরা এমন এক সময় এই স্বাধীনতা উৎসব পালন করছি, যখন উত্তরাখণ্ড, হিমাচল, মণিপুর, তেলেঙ্গানা এবং অন্ধ্রপ্রদেশে আমাদের কন্যা-সন্তানরা সাত সমুদ্র জয় করে ঘরে ফিরেছেন। তাঁরা ফিরে এসেছেন আমাদের মধ্যে সাত সমুদ্রে আমাদের ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলন শেষে। আমাদের আদিবাসী সন্তানরা, যাঁরা দূর-দূরান্তের অরণ্যের অধিবাসী, তাঁরা এভারেস্ট পর্বত শৃঙ্গে ত্রিবর্ণ রঞ্জিত পতাকা উত্তোলনের মাধ্যমে আমাদের জাতীয় পতাকার গৌরবকে তুলে ধরতে পেরেছেন। ওবিসি কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদাদানের দাবি দীর্ঘদিনের। ওবিসি কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদাদানের মাধ্যমে অনগ্রসর এবং বিশেষভাবে অনগ্রসর শ্রেণীগুলির স্বার্থরক্ষায় উদ্যোগী হয়েছে বর্তমান সংসদ। যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের সকলকে জানাই আমার আন্তরিক সমবেদনা। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকান্ডের ১০০ বছর পূর্তি আগামী বছরটিতে। জালিয়ানওয়ালাবাগের সেই ঘটনায় যে বীর ও সাহসীরা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাঁদের কাছ থেকে আমরা অনুপ্রেরণা লাভ করি। সেই সমস্ত নির্ভিক হৃদয়কে আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে আমি সম্মান ও অভিবাদন জানাই। ভারত বর্তমানে বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহৎ অর্থনীতির একটি দেশে পরিণত হয়েছে। যে সমস্ত বীর স্বাধীনতা সংগ্রামী দেশবাসীর পক্ষে স্বাধীনতা সংগ্রামে সামিল হয়েছিলেন, তাঁদের সকলকে আমি আমার হৃদয়ের অন্তঃস্থল থেকে অভিবাদন জানাই। স্বাধীনতার পরে বাবা আম্বেদকর সাহেবের উদ্যোগ ও নেতৃত্বে এক বিশেষ অন্তর্ভুক্তিমূলক সংবিধানের খসড়া রচিত হয়েছিল। এক নতুন ভারত গঠনের সঙ্কল্প সঙ্গে নিয়েই তার সেই আত্মপ্রকাশ। এক স্বনির্ভর, শক্তিশালী এবং সততঃ নিরন্তর উন্নয়নমুখী হয়ে উঠতে ভারতকে। ১২৫ কোটি দেশবাসীর কঠোর শ্রম, স্বপ্ন ও আশা-আকাঙ্ক্ষা যখন একযোগে কাজ করে যায়, তখন সাফল্য অর্জিত না হওয়ার কোন কারণ থাকতে পারে না। এটাই হল ভারতের আসল শক্তি। গত চার বছর ধরে যে সমস্ত কাজ আমরা করে চলেছি সেদিকে আপনারা যদি একবার ফিরে তাকান তাহলে বিস্ময়ের সঙ্গে লক্ষ্য করবেন যে কি অসম্ভব গতিতে দেশ এগিয়ে চলেছে এবং কি দ্রুততার সঙ্গে আমরা অগ্রগতির পথে এগিয়ে চলেছি। ২০১৩ সালে যেভাবে কাজ হত সেভাবে যদি আমরা কাজ করে যেতাম তাহলে হয়তো কয়েক শতাব্দী লেগে যেত ভারতকে পুরোপুরিভাবে উন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিক কাজকর্মের অভ্যাসমুক্ত করে তুলতে কিংবা দেশের প্রতিটি প্রান্তে বিদ্যুতের সুযোগ পৌঁছে দিতে অথবা গ্রাম ও শহরাঞ্চলের প্রত্যেক মহিলাকে এলপিজি সংযোগ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসতে। যদি আমরা ২০১৩-র সেই গতিতে কাজ করতাম, তাহলে একটি সমগ্র প্রজন্ম লেগে যেত অপটিক্যাল ফাইবারের মাধ্যমে সারা দেশকে যুক্ত করার কাজে। বিভিন্ন লক্ষ্য পূরণের কাজে আমরা এইভাবেই দ্রুততর গতিতে এগিয়ে যেতে আগ্রহী। গত চার বছরে পরিবর্তন বা রূপান্তরের এক অভিজ্ঞতা অর্জন করেছে আমাদের দেশ। এক নতুন আগ্রহ, উৎসাহ এবং সাহসিকতার সঙ্গে জাতি ক্রমশঃ এগিয়ে চলেছে। মহাসড়ক নির্মাণের কাজ এখন দ্বিগুণ এবং গ্রামে বাসস্থান নির্মাণের সংখ্যা চারগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। দেশে এখন রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদনের পাশাপাশি রেকর্ড সংখ্যক মোবাইল ফোন উৎপাদিত হচ্ছে। ট্র্যাক্টর বিক্রয়ের সংখ্যাও এখন এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে গেছে। স্বাধীনতার পরে এই প্রথম সবচেয়ে বেশি সংখ্যক বিমান সংগ্রহ করছে আমাদের দেশ। দেশে এখন প্রতিষ্ঠিত হচ্ছে নতুন নতুন আইআইএম, আইআইটি এবং এইম্‌স। ছোট ছোট স্থানগুলিতে নতুন নতুন কেন্দ্র স্থাপনের মাধ্যমে দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচিকে আরও উৎসাহ যোগানো হচ্ছে। টায়ার-২ এবং টায়ার-৩ শহরগুলিতে স্টার্ট আপ কর্মসূচি উত্তরোত্তর প্রসার লাভ করছে। প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের জন্য একটি ‘কমন সাইন’ অভিধান সংকলনের কাজও বর্তমানে এগিয়ে চলেছে। প্রযুক্তি ও আধুনিকীকরণের সুযোগ এখন সম্প্রসারিত দেশের কৃষিক্ষেত্রেও। আমাদের কৃষকরা বর্তমানে ক্ষুদ্র সেচ, বারি সিঞ্চন এবং বিন্দু বিন্দু সেচ ব্যবস্থার সঙ্গে ক্রমশঃ অভ্যস্ত হয়ে উঠেছে। নতুন নতুন উদ্দেশ্যকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের এগিয়ে চলা উচিৎ। কারণ, আমাদের লক্ষ্য যদি অস্বচ্ছ বা অস্পষ্ট থাকে, তাহলে অগ্রগতি কিন্তু অসম্ভব। একসঙ্গে অনেকগুলো বছর কেটে গেলেও বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে আমরা তখন কুল খুঁজে পাব না। কৃষকদের উৎপাদিত শস্যের মূল্যকে আকর্ষণীয় করে তোলার মতো এক সাহসী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি আমরা। বহু শস্যেরই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধি পেয়েছে উৎপাদন ব্যয়ের দেড়গুণেরও বেশি। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা নতুন নতুন ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে খোলাখুলিভাবে তাঁদের আগ্রহ দেখানোর ফলে তাঁদের সাহায্যেই আমরা জিএসটি-র সফল বাস্তবায়ন সম্ভব করে তুলতে পেরেছি। ব্যবসায়ীদের মধ্যে তা এক নতুন আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে। দেশের কল্যাণের স্বার্থে বিশেষ সাহস ও সদিচ্ছার সঙ্গেই রূপায়িত হয়েছে ‘বেনামি সম্পত্তি আইন’। ভারতকে এক সময় অর্থনীতির দিক থেকে বিশেষ ঝুঁকিপূর্ণ একটি দেশ বলে মনে করত বিশ্বের বিভিন্ন দেশ। কিন্তু আজ তারাই আবার যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বলতে শুরু করেছে যে সংস্কার কর্মসূচির ওপর আমাদের গুরুত্ব আমাদের মূল নীতিগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তুলছে। এক সময় ‘লাল ফিতের ফাঁস’ কথাটি প্রায়ই ব্যবহার করা হত। আর আজ ‘রেড কার্পেট’-এর বিষয়টি আলোচিত হচ্ছে সর্বত্র। বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলার র‍্যাঙ্কিং-এ আমরা পৌঁছে গিয়েছি ১০০তম অবস্থানে। সমগ্র দুনিয়া এখন বিশেষ গর্বের সঙ্গেই লক্ষ্য করছে আমাদের এই সাফল্য। এক সময় বিশ্বের অন্যান্য দেশের কাছে ‘ভারত’ কথাটির অর্থই ছিল ‘নীতির দিক থেকে পক্ষাঘাতগ্রস্ত’ এবং ‘বিলম্বিত সংস্কার’-এর একটি দেশ। কিন্তু আজ ভারতকে বর্ণনা করা হচ্ছে ‘সংস্কার, সংস্কার প্রচেষ্টা, কাজ ও সাফল্য এবং রূপান্তরমুখী’ একটি দেশ হিসাবে। ‘পাঁচটি প্রায় ভেঙে পড়া’ দেশের মধ্যে অন্যতম বলে মনে করা হত ভারতকে। কিন্তু বর্তমানে বলা হচ্ছে যে বহু কোটি ডলার বিনিয়োগের একটি সঠিক গন্তব্যভূমি হল আমাদের ভারত। ভারতের অর্থনীতি প্রসঙ্গে বলতে শোনা যাচ্ছে যে ‘ঘুমন্ত হাতি এখন ঘুম ভেঙে দৌড়তে শুরু করেছে’। বিশ্ব অর্থনীতি এবং আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির মতে আগামী তিন দশকে বিশ্বের অর্থনৈতিক শক্তিকে আরও মজবুত করে তুলতে পারবে ভারত। অতীতে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সদস্যপদ লাভ করার জন্য ভারতকে অপেক্ষা করতে হত। কিন্তু এখন এই ধরণের অসংখ্য প্রতিষ্ঠান নিজেরাই এগিয়ে আসছে ভারতকে সদস্যপদ দেওয়ার জন্য। বিশ্ব উষ্ণায়নের ক্ষেত্রে অন্যান্য দেশের কাছে আশার আলো জাগিয়ে তুলেছে ভারত। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার উদ্যোগকে স্বাগত জানানো হচ্ছে সমগ্র বিশ্বেই। খেলাধূলার জগতেও দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল এখন বেশ ভালোরকমই সাড়া জাগিয়ে তুলেছে। উত্তর-পূর্ব ভারতের সুদূরতম গ্রামটিতেও পৌঁছে গেছে বিদ্যুতের সুযোগ। মহাসড়ক, রেলপথ, আকাশপথ, জলপথ এবং তথ্যপথের প্রসার ও অগ্রগতির ক্ষেত্রেও উত্তর-পূর্ব ভারত একটি বিশেষ স্থান করে নিয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের তরুণ ও যুবকরা তাঁদের নিজের নিজের এলাকায় এখন বিপিও স্থাপন করছেন। জৈব কৃষি পদ্ধতির একটি বিশেষ কেন্দ্র হয়ে উঠেছে দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল। আমাদের দেশে মোট জনসংখ্যার ৬৫ শতাংশেরই বয়স ৩৫ বা তার আশেপাশে। কাজের প্রকৃতি পরিবর্তনের ক্ষেত্রেও এক বিশেষ দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে দেশের তরুণ ও যুবকরা। স্টার্ট আপ, বিপিও, ই-কমার্স কিংবা মোবিলিটি – যাই হোক না কেন, নতুন নতুন কাজের ক্ষেত্রে দেশের তরুণ ও যুবকদের এখন স্বচ্ছন্দ বিচরণ। দেশকে বর্তমানে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সঙ্কল্পবদ্ধ আমাদের তরুণ ও যুবসমাজ। মুদ্রা ঋণ সহায়তা দেওয়া হয়েছে দেশের ১৩ কোটি মানুষকে যা হল আমাদের এক বড় ধরণের সাফল্য। ঋণ গ্রহীতাদের মধ্যে ৪ কোটিই হলেন তরুণ ও যুবক যাঁরা এই প্রথম ঋণ সহায়তা লাভ করে স্বনিযুক্তির মাধ্যমে স্বাধীনভাবে এগিয়ে চলেছেন। বহির্মহাকাশে আগামী ২০২২ সালের মধ্যে মানুষ সহ মহাকাশ যান পাঠানোর সঙ্কল্প গ্রহণ করেছে আমাদের দেশ। ভারতই হল চতুর্থ দেশ যে এই ঝুঁকি গ্রহণ করতে পেরেছে। আমরা বর্তমানে কৃষিক্ষেত্রের আধুনিকীকরণ ও অগ্রগতির দিকে বিশেষ নজর দিয়েছি। দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ পূর্তির আগেই কৃষকদের আয় ও উপার্জন দ্বিগুণ করে তোলার স্বপ্ন রয়েছে আমাদের। আধুনিকীকরণের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রের সুযোগ-সুবিধাকে দিগন্তপ্রসারী করে তুলতে আমরা আগ্রহী। ‘বীজ থেকে বাজার’ পর্যন্ত মূল্য সংযোজনের কাজেও আগ্রহ রয়েছে আমাদের। বিশ্ব বাজারে দেশের কৃষক সাধারণের শক্তি বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরাই প্রথম কৃষি রপ্তানি নীতি রূপায়ণের পথে অগ্রসর হয়েছি। বর্তমানে জৈব কৃষি পদ্ধতি, নীল বিপ্লব, মধুর বিপ্লব, সৌরশক্তি চালিত কৃষি ব্যবস্থার নতুন নতুন পথ উন্মুক্ত করে দিতে এগিয়ে চলার পরিকল্পনা রয়েছে আমাদের। মৎস্যচাষের ক্ষেত্রে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম দেশ হল ভারত। ভারত থেকে মধু রপ্তানির পরিমাণও এখন দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। আখ উৎপাদকদের ক্ষেত্রে একটি খুশির খবর হল এই যে ইথানলের উৎপাদন এখন বৃদ্ধি পেয়েছে তিনগুণের মতো। গ্রামীণ অর্থনীতিতে অন্যান্য ক্ষেত্রগুলির গুরুত্বও কিছু কম নয়। মহিলা স্বনির্ভর গোষ্ঠী গঠন, কোটি কোটি টাকার বিনিয়োগ ইত্যাদির মাধ্যমে গ্রামাঞ্চলের সহায়সম্পদের প্রসার ঘটানোর কাজেও আমরা আগ্রহী। গ্রাম ভারতকে আমরা আরও দক্ষ করে তুলতে চাই এবং এই লক্ষ্যেই কাজ করে চলেছি আমরা। খাদিপণ্যের বিক্রিও এখন বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ মাত্রায়। সৌরশক্তি চালিত কৃষি পদ্ধতিতে এখন আগ্রহী হয়ে উঠেছে দেশের কৃষক সমাজ। এই কারণে কৃষিক্ষেত্রে অবদানের পাশাপাশি, সৌর জ্বালানি বিপণনের মাধ্যমে অর্থ উপার্জনের দ্বারও এখন তার কাছে উন্মুক্ত। অর্থনৈতিক বিকাশ ও অগ্রগতির পাশাপাশি, মানবজীবনের মর্যাদা বৃদ্ধির বিষয়টিকেও আমরা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি। তাই, একজন সাধারণ মানুষ যাতে শ্রদ্ধা, সম্ভ্রম ও গর্বের সঙ্গে তাঁর জীবন অতিবাহিত করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে আমরা নির্দিষ্ট কর্মসূচিগুলি নিয়ে আরও এগিয়ে যেতে আগ্রহী। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা হু-র প্রতিবেদন অনুযায়ী, স্বচ্ছতা অভিযানের মাধ্যমে ৩ লক্ষ শিশুকে রক্ষা করা সম্ভব হয়েছে। তাঁর সার্ধশত জন্মবার্ষিকীতে কোটি কোটি ‘স্বচ্ছতাগ্রহী’ স্বচ্ছ ভারত কর্মসূচিকে বাস্তবায়িত করে তোলার মাধ্যমে প্রকৃত অর্থেই শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন তাঁর প্রতি। দেশের দরিদ্রতম ব্যক্তিটির কাছেও স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পৌঁছে দিতে কেন্দ্রীয় সরকার ‘প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা’ অভিযানের সূচনা করেছে। এই কর্মসূচিটির আওতায় বর্তমানে যে কোন ব্যক্তি কোন ভালো হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসার সুযোগ গ্রহণ করতে পারেন। সংশ্লিষ্ট প্রতিটি পরিবার বছরে ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। স্বচ্ছতা ও প্রযুক্তির ওপর আমরা বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছি। বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা লাভের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের যাবতীয় বাধা ও অসুবিধা দূর করবে প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার। এই লক্ষ্য পূরণে প্রযুক্তির পদ্ধতিগত ব্যবস্থাকেও আমরা উন্নত করে তুলেছি। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মধ্যবিত্ত পরিবার এবং তরুণ ও যুবকদের জন্য নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার প্রসার ঘটানো হচ্ছে। টায়ার-২ এবং টায়ার-৩ শহরগুলিতে নির্মাণ করা হবে নতুন নতুন হাসপাতাল। স্বাস্থ্যকর্মীও নিযুক্ত হবেন প্রচুর সংখ্যায়। আগামী বছরগুলিতে কর্মসংস্থানের সুযোগ-সুবিধারও বিশেষ প্রসার ঘটবে। এই চার বছরে দরিদ্র মানুষের ক্ষমতায়নে আমরা চেষ্টা চালিয়ে গিয়েছি। এক আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানের প্রতিবেদনে প্রকাশ যে গত দু’বছরে দারিদ্রসীমার ওপরে উঠে এসেছেন ৫ কোটি মানুষ। দরিদ্রদের ক্ষমতায়নের জন্য রয়েছে বেশ কয়েকটি কর্মসূচি। কিন্তু দালালদের খপ্পরে পড়ে দরিদ্র সাধারণ মানুষ এই কর্মসূচির সুযোগ ঠিকমতো ভোগ করতে পারছেন না। সমস্তরকম গলদ ও ফাঁকফোকর দূর করার জন্য সরকারিভাবে চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া হচ্ছে। কালো টাকা ও দুর্নীতিকে নির্মূল করার কাজে আমাদের প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে। আমাদের এই সমস্ত পদক্ষেপের ফলেই ৯০ হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় ঘটেছে সরকারি কোষাগারে। যাঁরা সৎ, তাঁরাই কর মিটিয়ে দেন। তাঁদের অবদানেই রূপায়িত হয় আমাদের কর্মসূচিগুলি। তাই, কৃতিত্ব প্রাপ্য করদাতাদের, সরকারের নয়। ২০১৩ সাল পর্যন্ত বিগত ৭০ বছরে প্রত্যক্ষ করদাতার সংখ্যা ছিল মাত্র ৪ কোটি। কিন্তু সেই সংখ্যা প্রায় দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়ে এখন দাঁড়িয়েছে ৭ কোটি ২৫ লক্ষে। দীর্ঘ ৭০ বছরে পরোক্ষ কর ব্যবস্থায় রাজস্ব সংগ্রহের পরিমাণ দাঁড়িয়েছিল ৭০ লক্ষ। কিন্তু জিএসটি রূপায়ণের মাত্র এক বছরের মধ্যেই ১৬ লক্ষ রাজস্ব সংগ্রহ করতে পেরেছি আমরা। কালো টাকার দুর্নীতিকে আমরা প্রশ্রয় দিতে পারি না। জানি বাধা রয়েছে অনেক। কিন্তু তবুও আমি পিছিয়ে আসব না। দিল্লির রাস্তায় কিন্তু ক্ষমতার দালালদের এখন আর দেখা যায় না। স্বচ্ছতা রক্ষার স্বার্থে অনলাইন পদ্ধতি ও প্রক্রিয়ার আমরা সূচনা করেছি। তথ্যপ্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহারকে আমরা নিয়ে গিয়েছি সর্বোচ্চ মাত্রায়। শর্ট সার্ভিস কমিশনের মাধ্যমে ভারতের সশস্ত্র বাহিনীতে আমরা নিয়োগ করব মহিলা আধিকারিকদের। স্বচ্ছতা পুরোপুরি বজায় থাকবে আমাদের সমগ্র প্রক্রিয়াটিতে। পুরুষ আধিকারিকদের মতোই সমান সুযোগ ও অধিকার লাভ করবেন মহিলা আধিকারিকরা। ধর্ষণের ঘটনা নিঃসন্দেহে বেদনাদায়ক। কিন্তু যে যন্ত্রণা ভোগ করতে হয় ধর্ষিতাকে, তা কিন্তু আরও ভয়ঙ্কর। এই সত্যটি উপলব্ধি করা উচিৎ দেশের জনসাধারণের। ধর্ষিতার কষ্ট, যন্ত্রণা ও ভয়কে অনুভব ও উপলব্ধি করা প্রয়োজন প্রত্যেকেরই। আসুরিক মানসিকতা ও কাজকর্ম থেকে সমাজ তথা দেশকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত করতে হবে। আইন তার নিজের পথেই চলবে। আর ঐ ধরণের দুষ্কর্ম বন্ধ করতে হবে আমাদের। তাই, আমরা আক্রমণ করব সেই মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গিকেই। এই ধরণের বিকৃতির অবসান ঘটাতে কাজ করে যাওয়া উচিৎ আমাদের। তিন তালাক প্রথা মুসলিম মহিলাদের জীবনকে দুর্বিসহ করে তুলেছে। যাঁরা তালাক পাননি তাঁদের দুরাবস্থাও কম কিছু নয়। তাই, সংসদের বাদল অধিবেশনে একটি আইন বলবৎ করে মুসলিম মহিলাদের সেই যন্ত্রণা থেকে আমরা মুক্তি দিতে চেয়েছিলাম। কিন্তু আজও এমন কিছু কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যাঁরা এই বিলের অনুমোদনের বিরোধিতা করে যাচ্ছেন। নিরাপত্তা বাহিনীগুলির তৎপরতা এবং রাজ্য সরকারগুলির প্রচেষ্টার কারণে ও সেইসঙ্গে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মসূচি রূপায়ণের সৌজন্যে এবং সর্বোপরি জনসাধারণের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে সশস্ত্র বাহিনীর বিশেষ ক্ষমতা আইন থেকে মুক্ত করা হয়েছে ত্রিপুরা ও মেঘালয়কে। জম্মু ও কাশ্মীরের সমস্যা নিরসনে শ্রী অটলবিহারী বাজপেয়ী প্রদর্শিত পথটিকেই শ্রেয় বলে মনে করি আমরা। ঐ পথকেই আমরা অনুসরণ করে চলব। আগামী মাসগুলিতে জম্মু ও কাশ্মীরের গ্রামীণ জনসাধারণ তাঁদের অধিকারগুলি ভোগ করার সুযোগ গ্রহণ করতে পারবেন। তাঁরা নিজেরাই তাঁদের দেখভাল করতে পারবেন যথোপযুক্তভাবে। কারণ, কেন্দ্রীয় সরকার উন্নয়নের কাজে পর্যাপ্ত পরিমাণ অর্থ দিয়ে থাকে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিকে। পঞ্চায়েত এবং স্থানীয় প্রতিষ্ঠানগুলির নির্বাচনের ব্যবস্থা গ্রহনে আমাদের উদ্যোগী হতে হবে। সেই লক্ষ্যেই আমরা এগিয়ে চলেছি। রান্নাঘরের ধোঁয়া ও ঝুল-কালি থেকে মুক্তি পেতে ইচ্ছুক প্রত্যেক ভারতীয়। তাঁদের এই ইচ্ছাপূরণে সকলের জন্যই রান্নার গ্যাসের ব্যবস্থা করেছি আমরা। নির্মল পানীয় জলের চাহিদা রয়েছে প্রত্যেক ভারতবাসীর। তাই আমাদের লক্ষ্য হল সকলের জন্য জলের ব্যবস্থা করা। আবার দক্ষতা বিকাশেও আগ্রহী প্রত্যেক ভারতবাসী। তাই, সকলের জন্য দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচির ব্যবস্থাও করেছি আমরা। উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ পেতে ইচ্ছুক ভারতের প্রতিটি ব্যক্তি। আর এই লক্ষ্যেই রূপায়িত হচ্ছে আমাদের সকলের জন্য স্বাস্থ্য কর্মসূচিটি। নিরাপত্তার কারণে প্রত্যেক ব্যক্তিই চান একটি করে স্বাস্থ্যবিমার সুযোগ। তাঁদের এই চাহিদা পূরণে সকলের জন্যই বিমার সুযোগ আমরা সম্প্রসারিত করছি। ইন্টারনেটের সুযোগ পেতে আগ্রহী প্রত্যেক ভারতবাসী। সকলের জন্য এই সংযোগের ব্যবস্থা করতে উদ্যোগ গ্রহণ করেছি আমরা। সংযোগ ও যোগাযোগ প্রসারের মন্ত্রকে সম্বল করে উন্নয়নের পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা বিশেষভাবে আগ্রহী। সংঘাত ও সংঘর্ষের পথে যেতে আমাদের বিন্দুমাত্র আগ্রহ নেই। পথ বা সড়ক অবরোধও আমাদের কাম্য নয়। কারোর কাছে মাথা নোয়াতে আমরা মোটেই রাজি নই। আমাদের পৌঁছতে হবে নতুন নতুন উচ্চতায়। মূলধনী পণ্যক্ষেত্রে ভারত ও জার্মানির মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিটি অনুমোদন লাভ করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার।প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে বিষয়টিতে সম্মতি দেওয়া হয়। সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবা সরবরাহ ক্ষেত্রের উদ্যোগ ব্রত হিসাবে উদ্যোগ রূপায়ণ ফ্রান্সেরপ্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জয়ী মিঃ ইমান্যুয়েল ম্যাকঁর-কে আজ এক দূরভাষ বার্তায়অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বর্তমানে অছি পরিষদে একটিমাত্র জাতীয় দলের প্রতিনিধি রাখার সংস্হান আছে। বিশেষ দলের নাম বাদ দিলে অছি পরিষদ অরাজনৈতিক রূপ নেবে। প্রস্তাবিত সংশোধনীতে বিরোধী দলের প্রতিনিধিত্ব নিশ্চিত হবে। তাই, কেন্দ্রীয় সরকার চায় যে জাতির বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্র ও রাজ্য একসঙ্গে এক সহযোগিতার বাতাবরণের মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাক। জাতির সার্বিক ও সুসংহত বিকাশের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নে প্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করে তুলতে হবে। এছাড়াও, রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত আর্থিক ঘাটতির বিষয়ে প্রতি বছরই লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার প্রস্তাব দেওয়া হয় অর্থ কমিশনের পক্ষ থেকে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে দুই দেশের বিমা নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের মধ্যে তথ্য বিনিময় ও গবেষণা সহায়তা সহ পারস্পরিক সহযোগিতা এবং সমন্বয়সাধনের ক্ষেত্রে এক কাঠামো গড়ে উঠবে। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের কর্তৃপক্ষই বিভিন্ন নিয়ন্ত্রণমূলক ব্যবস্থা ও পদ্ধতি সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা বিনিময় করবে এবং প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহায়তা যোগাবে। “স্বামীবিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তীতে আমি তাঁর উদ্দেশ্যে প্রণাম জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার রাজ্যসভার অবসর গ্রহণকারী ও অবসরপ্রাপ্ত সাংসদদের সম্মানে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে যোগ দেন। ভারতেপরিকাঠামো উন্নয়ন এবং তৃতীয় দেশগুলিতে পণ্য ও পরিষেবা যোগানের উদ্দেশ্যে ভারতেরআমদানি-রপ্তানিকারক ব্যাঙ্ক (একজিম ব্যাঙ্ক) এবং কোরিয়ার এক্সপোর্ট-ইমপোর্টব্যাঙ্ক (কেগজিম)-এর মধ্যে প্রস্তাবিত চুক্তিটিকে আজ অনুমোদন দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। আগামী১৪ ও ১৫ জুন, ২০১৭ তারিখে ভারতের অর্থমন্ত্রী শ্রী অরুণ জেটলির আসন্ন কোরিয়াসফরকালে দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হবে এই বিশেষ চুক্তিটি। ভারত ও কোরিয়ার মধ্যেঅর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক আলাপ-আলোচনার জন্য ঐ দেশ সফর করবেন ভারতেরঅর্থমন্ত্রী। এই প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার দায়িত্ব জাতীয় চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ অর্থাৎ, আই সি এম আর-এর। প্রস্তাবিত এই সংস্থাটিকে প্রাণী প্রজনন ও সংরক্ষণের জন্য বিশ্বমানের করে তোলা হবে। জৈব-চিকিৎসার গবেষণা ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট কর্মীদের প্রশিক্ষণদানের সুযোগসুবিধাও থাকবে এই বিশেষ প্রতিষ্ঠানটিতে। গত মাসে আমরা সবাই দীপাবলির উৎসবপালন করেছি। প্রত্যেক বছরের মতো এবারও দীপাবলির সময়, সেনাবাহিনীর সঙ্গে দীপাবলিপালন করতে আমি চীন সীমান্তে গিয়েছিলাম। ১২৫ কোটি ভারতবাসী যে অতুলনীয় আবেগে এই দীপাবলিকেসেনাবাহিনীর জওয়ানদের সমর্পণ করেছেন – সেনানীদের উৎসর্গ করেছেন এবারে, সেই আবেগেরউপলব্ধি জোয়ানদের চেহারায় প্রতিফলিত হচ্ছিল। যখন আমি এইগুলো দেখছিলাম, কী অপূর্ব সব কল্পনায় সে সববানানো, ভেবে অবাক হয়ে গেছি। সেনাবাহিনীরএক জওয়ান লিখেছেন – উল্টে এবারে মনে হচ্ছিল, ১২৫ কোটিভারতবাসীর সঙ্গেই যেন দীপাবলির উৎসবে সামিল হয়েছি। প্রিয়দেশবাসী, যে আন্তরিকতা, খুশী, ভালোবাসা ও আনন্দ আমাদের সেনাবাহিনীর জওয়ানদের মধ্যেসঞ্চারিত হয়েছে, একি শুধু হোলি-দীপাবলিতেই সীমাবদ্ধ থাকবে, না থাকা উচিৎ? যখন রাষ্ট্র সেনাবাহিনীর সঙ্গেএকাত্ম হয়ে উঠবে, সেনাবাহিনীর শক্তিও ১২৫ কোটি গুণ বেড়ে যাবে। কিছুদিন আগে,জম্মু ও কাশ্মীরের সব গ্রামের প্রধানরা আমার সঙ্গে দেখা করেছিলেন। ওঁরাজম্মু-কাশ্মীর পঞ্চায়েত সম্মেলনে যোগ দিতে এসেছিলেন। কাশ্মীর উপত্যকার বিভিন্নগ্রাম থেকে প্রায় ৪০-৫০ জন প্রধান এসেছিলেন। অনেকক্ষণ ধরে কথাবার্তার সুযোগহয়েছিল। এত আন্তরিক ভাবে খোলা মনে ওঁরা সেসব কথা বলছিলেন, আমিঅভিভূত হয়ে পড়েছিলাম। কিছুদিন আগে কাশ্মীরে বোর্ড এক্‌জাম হয়ে গেল এবংসেখানকার প্রায় ৯৫% ছাত্র-ছাত্রী পরীক্ষায় বসেছেন। বোর্ডের পরীক্ষায় এই বিপুলসংখ্যায় ছাত্র-ছাত্রীর অংশগ্রহণে আমি স্পষ্ট আভাস পাচ্ছি যে জম্মু-কাশ্মীরউপত্যকায় আমাদের বাচ্চারা শিক্ষার মাধ্যমে উজ্জ্বল ভবিষ্যতের বিকাশের জন্যদৃঢ়প্রতিজ্ঞ। ছাত্র-ছাত্রীদের এই অঙ্গীকারের জন্য শুধু ওদের নয়, ওদের অভিভাবক,বাবা-মা, শিক্ষক এবং সর্বোপরি গ্রামপ্রধানদের অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। আমার প্রিয়ভাই-বোনেরা, যখন আমি এবারের ‘মন কি বাত’ নিয়ে জনসাধারণের আলোচনা প্রস্তাব চেয়েছি,আমি স্বীকার করছি, প্রত্যেকে একটাই প্রস্তাব করেছেন। প্রত্যেকেই চেয়েছেন পাঁচশো ওহাজার টাকার নোট নিয়ে আমি বিস্তারিত ভাবে কিছু বলি। ৮-ই নভেম্বর রাত ৮-টায় আমিদেশের সঠিক উন্নয়নের জন্য, রাষ্ট্রের পক্ষে এক মহা অভিযানের কথা জানিয়েছিলাম। যেসময় আমি এই সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম এবং আপনাদের সেই সিদ্ধান্ত জানিয়েছিলাম, স্পষ্টবলেছিলাম, এটা একটা সাধারণ সিদ্ধান্ত নয়, এটা একটা কঠিন পদক্ষেপ। এই সিদ্ধান্তনেওয়াটা যেমন অত্যন্ত কঠিন ছিল, তা প্রয়োগ ও বাস্তবায়িত করা আরও কঠিন। সত্তরটা বছর ধরে যে অসুখ ছড়িয়েছে, তার থেকে সুস্থ হয়েওঠা খুব সহজ ঘটনা নয়। আপনাদের কষ্টের কথা আমি ভালো ভাবেই উপলব্ধি করতে পারছি। আমি দেখছি, সারা বিশ্ব দেখছে, নানান অর্থনীতিবিদ্‌ এই বিশাল দেশেবিভিন্ন কারেন্সি, কালো টাকা, জাল নোট এই সব কিছু নিয়ে চর্চা করে চলেছে। বিশ্বেরমানুষ কৌতূহলী যে ১২৫ কোটি ভারতবাসী এমন কঠিন পরিস্থিতি সামলে উঠতে পারে কিনা। এমনসংশয় তো হতেই পারে। ১২৫ কোটি ভারতবাসীর নিজের দেশের প্রতি অগাধ শ্রদ্ধা ও পূর্ণ বিশ্বাসআছে যে তাঁরা দেশের উন্নতির জন্য সর্বান্তঃকরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। সারা দেশের কেন্দ্রসরকার, রাজ্য সরকার, স্বশাসিত সংস্থা, ১ লাখ ৩০ হাজার ব্যাঙ্কের শাখা, লক্ষ লক্ষব্যাঙ্ক কর্মচারি, দেড় লক্ষেরও বেশি ডাকঘর, এক লক্ষেরও বেশি ব্যাঙ্ক-সহযোগীরাত-দিন এই ব্যবস্থায় কাজ করে চলেছেন, এই কাজে নিজেদের উৎসর্গ করেছেন। বিচিত্র সবহট্টগোলের মাঝে এই সমস্ত কর্মীরা ধৈর্যের সঙ্গে দেশসেবার এক মহান কর্মযজ্ঞ মেনেনিয়ে এক অভূতপূর্ব পরিবর্তনের কাজে মগ্ন রয়েছেন। ওঁদের সামর্থের পরিচয় পেয়েছি।৭০ বছরে যে কাজ অসম্ভব বলে মনে হয়েছিল, ওঁরা তা সম্ভব করে দেখিয়েছেন। আজ আবার সেইকঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছি এবং আমি বিশ্বাস করি ১২৫ কোটি দেশবাসীর সংকল্প,তাঁদের পুরুষকার, এই দেশ – এই রাষ্ট্রকে নতুন শক্তিতে বলীয়ান করে তুলবেই। কিন্তুদুর্নীতি এমনই শিকড় গেড়েছে, যে কিছু মানুষের দুর্নীতির অভ্যাস যাচ্ছে না। অনেকেইএখনও মনে করছেন দুর্নীতির টাকা, কালো টাকা, হিসাব-বহির্ভূত টাকা চালু রাখার কোনওনা কোনও উপায় বের করে নেবেন। আমার বেশি খারাপ লাগছে যখন দেখছি, ওঁরা নিজেদের অসৎ কাজেরউপায় বের করতে সাধারণ গরীব মানুষদের জড়াচ্ছেন। গরীবদের বোকা বানিয়ে তাঁদেরপ্রলুব্ধ করে, তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে টাকা ঢুকিয়ে, তাঁদের নানান দুর্নীতিরসঙ্গী করে নিজেদের টাকা বাঁচাচ্ছেন। বেনামীসম্পত্তিকে আওতায় আনার জন্য অত্যন্ত কঠোর নিয়মকানুন বানানো হয়েছে, যেগুলি সবক্ষেত্রে বাস্তবায়িত করা হচ্ছে। কারণ সরকার চায় না যে সাধারণ দেশবাসী কোনও রকমঅসুবিধার সম্মুখীন হোক। আপনার এই পাঁচশো-হাজারের নোট বন্ধকরার পদক্ষেপ অত্যন্ত প্রশংসনীয়। আমার অনুরোধ, ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে এমন কয়েকটিউদাহরণ দিন যেখানে সাধারণ মানুষ বহু অসুবিধার সম্মুখীন হয়েও রাষ্ট্রের উন্নতিরজন্য আপনার এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানিয়েছে। এতে লোকের উৎসাহ বৃদ্ধি পাবে। রাষ্ট্রনির্মাণের জন্য ‘ক্যাশ লেস’ প্রণালী খুবই জরুরি বলে আমি মনে করি। ঠিক এরকমই আরএকটি ফোন আমি পাই কর্ণাটকের শ্রীমান য়েলপ্পা ওয়েলাঙ্কারের কাছ থেকে। এই জন্য আমি আপনাকে আরওএকবার ধন্যবাদ জানাই।” মিডিয়া,সাধারণ মানুষ ও সরকারী সূত্রের মাধ্যমে যখন এই ধরনের খবর শুনতে পাই, তখন কাজ করারউৎসাহ অনেক বেড়ে যায়। পেট পুরে খেয়ে যান ও আবার যখন এই রাস্তা দিয়ে যাবেন, তখন পয়সামিটিয়ে যাবেন। লোকেরা সেখানে গিয়ে খেয়েছেন, আর দুই-চার-ছয়দিন বাদে আবার যখন সেইরাস্তা দিয়ে ফিরেছেন তখন বিল মিটিয়ে দিয়েছেন। এই হচ্ছে আমার দেশের শক্তি, যেখানেসেবা পরায়ণতা ও ত্যাগ ধর্মই প্রধান। আমিনির্বাচনের সময় যে চা-বৈঠক করতাম সেই খবর সারা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়েছিল। বিশ্বেরঅনেক দেশ চা-বৈঠক শব্দটির প্রয়োগও শিখে গিয়েছিল। কিন্তু আমার এটা জানা ছিল না যেবিয়েতেও ‘চা-বৈঠক’ হতে পারে! বরযাত্রীরাও এই ব্যাপারটিকে সমর্থন করেন। এই ধরনের বিয়েরমাধ্যমে সুরাতের ভরত মারু ও দক্ষা পরমার দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াইয়েঅংশগ্রহণ করে এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন। যখন সঙ্কট আসে, তখনই মানুষ নতুন নতুন পথ খুঁজে নেয়। একবার টিভি-রখবরে আসামের ঢেকিয়াজুলি গ্রামের একটি ঘটনা আমার চোখে পড়ে। গ্রামটি চা-শ্রমিকদেরএবং এই চা-শ্রমিকরা সাপ্তাহিক মজুরি পেয়ে থাকে। এবারে যখন দু-হাজার টাকার নোটদেওয়া হয়, তখন তাঁরা কী করলেন? লোকেরা এভাবেইনতুন নতুন উপায় বের করে নিচ্ছে। আর এর ফলও চোখে পড়ছে। সরকারের কাছে খবর আসে যেআসামের চা বাগানের শ্রমিকরা এ-টি-এম পরিষেবার দাবি জানাচ্ছেন। দেখুন, কীভাবেগ্রাম্য জীবনেও পরিবর্তন আসছে। প্রায় চল্লিশ-পঞ্চাশটা শহর থেকে আমরাখবর পেয়েছি যে যাঁরা এতদিন কর ফাঁকি দিতে অভ্যস্ত ছিলেন, যে কোনও ধরনের ট্যাক্স –যেমন, জলকর, বিদ্যুতের বিল, প্রভৃতি – তাঁরা এখন তড়িঘড়ি পুরনো নোটে সমস্ত বকেয়ামিটিয়ে দিচ্ছেন। আপনারা ভালোভাবেই জানেন যে গরীব মানুষ দুদিন আগে হলেও ন্যূণতমবকেয়াও জমা দিয়ে দেন। কিন্তু ধনী, ক্ষমতাবান লোকেরা, যাঁরা জানেন, তাঁদের কখনও এইব্যাপারে প্রশ্ন করা হবে না, তাঁরাই এর ফায়দা উঠিয়ে থাকেন। আর এই জন্যই বাকিরপরিমাণ বাড়তে থাকে। প্রত্যেক মিউনিসিপ্যালিটির ট্যাক্সের কেবল মাত্র পঞ্চাশ শতাংশইজমা পড়ে। কিন্তু আট তারিখের এই ঘোষণার পরে মানুষজনের মধ্যে পুরনো নোটে বকেয়া জমাদেওয়ার হিড়িক পড়ে যায়। কোথায় তিন– সাড়ে তিন হাজার, আর কোথায় তেরো হাজার! এখন সেই সবমিউনিসিপ্যালিটির কাছে চার গুণ পয়সা জমা পড়েছে, যা স্বাভাবিক ভাবে গরীব বস্তিরনিকাশী ব্যবস্থায়, পানীয় জলের ব্যবস্থায় ও অঙ্গণওয়ারির জন্য খরচ করা হবে। এরকম বহুউদাহরণ আমরা পাচ্ছি, যার প্রত্যক্ষ সুফল আমাদের নজরে আসছে। ভাই-বোনেরা,গ্রাম ও চাষিভাইরা আমাদের দেশের অর্থব্যবস্থার মেরুদণ্ড স্বরূপ। সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও চাষিভাইরা নতুন নতুন পথ বেরকরে নিয়েছেন। সরকারী তরফ থেকেও কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, যেখানেচাষিভাইদের এবং গ্রামগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। আমাদের দেশেরছোটো ব্যবসায়ীরা রোজগারের সুযোগও তৈরি করেন এবং আর্থিক উন্নয়নেও যোগদান করেন।তাঁদের জন্য গতবছর বাজেটে আমি একটি গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। কিন্তু এই সিদ্ধান্তের ফলে এই সমস্ত ছোটোব্যবসায়ীদেরও অসুবিধা হওয়া স্বাভাবিক। আপনারা দেখেছেন, বড় বড় Mall- গুলি টেকনোলজিরমাধ্যমে ব্যবসা চালিয়ে থাকে। ঠিক সেইভাবে একজন ছোটো ব্যবসায়ীও সামান্য ‘ইউজারফ্রেইণ্ডলি’ টেকনোলজির সাহায্যে কারবারের লেনদেন করতে পারেন। এক্ষেত্রে কোনওলোকসানের সম্ভাবনা তো নেই-ই, প্রসারের সুযোগ আছে। আপনারা বাণিজ্যিক প্রসারের জন্যমোবাইল ফোনেই সম্পূর্ণ ব্যাঙ্কিং-এর সুবিধা নিতে পারেন এবং নগদ নোটের লেনদেন ছাড়াইব্যবসা চালু রাখতে পারেন। আমি শ্রমিক ভাই-বোনদেরও বলতে চাই যে, আপনাদের উপর অনেক শোষণ চালানোহয়েছে। কাগজে লেখা হচ্ছে এক বেতন আর হাতে যা দেওয়া হচ্ছে তা আরেক রকম। কখনও পুরোপারিশ্রমিক পাওয়া গেল তো দেখা গেল বাইরে একজন দাঁড়িয়ে আছে, তাকে ভাগ দিতে হবে আরশ্রমিক বাধ্য হয়ে এই শোষণকে জীবনের অঙ্গ বলে মেনে নেয়। এখনকার নতুন ব্যবস্থায় আমরাচাই যে ব্যাঙ্কে আপনার অ্যাকাউন্ট থাকুক, আপনার পারিশ্রমিকের অর্থ ব্যাঙ্কে জমাহোক্‌ যাতে ন্যূণতম মজুরির শর্ত পালিত হয়। আর একবার আপনার ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্টে টাকা এসে গেলে আপনিআপনার ছোট মোবাইলে – কোনও বড় স্মার্ট ফোন দরকার নেই – আজকাল তো আপনার মোবাইল ফোনইমানিব্যাগের কাজ করে – সেই মোবাইল ফোন দিয়ে আশপাশের ছোটখাটো দোকানে যা কেনার কিনতেপারেন, ওটা থেকে পয়সা মিটিয়ে দিতে পারেন। আজ আমি বিশেষভাবে যুবক বন্ধুদেরসঙ্গে কথা বলতে চাই। আপনারা, আমার দেশের যুবক ও যুবতীরা, আমি জানি আমার সিদ্ধান্ত আপনাদেরপছন্দ হয়েছে। আমি এটাও জানি যে আপনারা এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন করেন। আমি এও জানি যেএই ব্যাপারটাকে সদর্থকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে আপনারা অনেক অবদানও রাখবেন। কিন্তুবন্ধুরা, আপনারা আমার সত্যিকারের সৈন্য, সত্যিকারের বন্ধু। আমার বাহাদুর তরুণরা, আপনারা কি আমাকে সাহায্য করতে পারেন? শুধু আমারসঙ্গে থাকবেন, এইটুকুতে কাজ হবে না। আজকের দুনিয়া সম্পর্কে যে ধারণা আছে আপনাদের,তা পুরনো প্রজন্মের নেই। এমন হতে পারে যে আপনাদের পরিবারে বড় ভাইও এতটা জানে না আরমা-বাবা, কাকা-কাকিমা, মামা-মামীও সম্ভবতঃ এতটা জানেন না। আপনারা জানেন ‘অ্যাপ’ কীজিনিস, ‘অনলাইন ব্যাঙ্কিং’ কী, ‘অনলাইন টিকিট’ বুকিং কীভাবে হয়। আপনাদের জন্য এসবখুব সাধারণ ব্যাপার এবং আপনারা এর ব্যবহারও করেন। কিন্তু আজ দেশ যে মহান কাজটাকরতে চায়, আমাদের সেই স্বপ্ন হল ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’। এটা ঠিক যে একশো শতাংশক্যাশলেস সোসাইটি সম্ভব নয়। আপনারা জানেন, ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’র জন্য, ডিজিট্যাল ব্যাঙ্কিং-এরজন্য বা মোবাইল ব্যাঙ্কিং-এর জন্য আজ কত সুযোগ রয়েছে। প্রত্যেকটা ব্যাঙ্ক অনলাইনসুবিধা দেয়। হিন্দুস্থানে প্রতিটি ব্যাঙ্কের নিজস্ব মোবাইল অ্যাপ আছে। প্রতিটি ব্যাঙ্কেরনিজস্ব ওয়ালেট আছে। ওয়ালেটের সাদামাটা অর্থ হল – ‘ই’-মানিব্যাগ। বেশ কয়েকরকম কার্ডপাওয়া যায়। মোবাইল ফোনে যেমন প্রি-পেইড কার্ড পাওয়া যায়, তেমনই ব্যাঙ্কেওপয়সা খরচের জন্য কার্ড পাওয়া যায়। এ এক বড় প্ল্যাটফর্ম, ব্যবসা-বাণিজ্যের‘বিশ্বজনীন মূল্য সূচক’ ( UPI ), যা দিয়ে আপনি কেনাকাটাও করতে পারেন, অর্থও পাঠাতে পারেন,অর্থ গ্রহণও করতে পারেন। আর এই কাজটা এতটাই সরল যেমনটা আপনার হোয়াট্‌স অ্যাপেবার্তা পাঠানো। যিনি কোনও লেখাপড়াই শেখেন নি তেমন ব্যক্তিও জানেন কেমনভাবে হোয়াট্‌সঅ্যাপে বার্তা পাঠাতে হয় বা আসে, ফরওয়ার্ড কীভাবে করতে হয়, কীভাবে তা ঢোকে। শুধুএটাই নয়, টেকনোলজি দিনে দিনে এত সরল হয়ে যাচ্ছে যে এই কাজের জন্য কোনও বড় স্মার্টফোনেরও প্রয়োজন নেই। সাধারণ বৈশিষ্ট্য-সহ যে ফোন পাওয়া যায়, তাতেও ক্যাশট্রান্সফার হতে পারে। ধোপা হোক বা শাকসব্জী, দুধ, খবরের কাগজ, চা, ছোলা বিক্রেতা হোক– সবাই অনায়াসে এটা ব্যবহার করতে পারে। আমার তরুণ বন্ধুরা, এতসব হওয়ারপরেও একটা গোটা প্রজন্ম এমন রয়েছে, যাঁরা এইসব ব্যাপারের সঙ্গে অপরিচিত। আর আপনারাসবাই, আমি ভালো ভাবেই জানি, এই মহান কাজে সক্রিয় রয়েছেন। তেমনই আজ যখন এত বড়ো পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে চলেছিআমরা তখনই আপনাদের ভেতরের মৌলিক সৃষ্টিশীলতা প্রকট হচ্ছে। এক কাজ করুন আপনারা, আজথেকেই প্রতিজ্ঞা করুন যে আপনি স্বয়ং ‘ক্যাশলেস সোসাইটির এক অঙ্গ হবেন। অনলাইনখরচের যত প্রযুক্তি আছে তা ব্যবহার করবেন নিজের মোবাইল ফোনে। শুধু এইটুকুই নয়,প্রতি দিন আধ ঘণ্টা, এক ঘণ্টা, দু’ঘণ্টা সময় বের করে কম করে দশটা পরিবারকে বোঝাবেনএই প্রযুক্তি কী, কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, কেমনভাবে নিজের ব্যাঙ্কের অ্যাপ ডাউনলোডকরতে হয়, নিজের অ্যাকাউন্টে যে অর্থ পড়ে আছে সেই অর্থ কীভাবে খরচা করা যায়, কীভাবেদোকানদারকে তা দেওয়া যায়। দোকানদারকেও শেখান কীভাবে ব্যবসা করা যায়। আপনিস্বেচ্ছায় এই ‘ক্যাশলেস সোসাইটি’-তে প্রবেশের, এই নোটের চক্কর থেকে সমাজকে বের করেআনার যে মহা-অভিযান, দেশকে দুর্নীতিমুক্ত করার যে অভিযান, কালো টাকা থেকে মুক্তিপাওয়ানোর যে অভিযান, মানুষকে দুর্দশা আর সমস্যা থেকে মুক্ত করার যে অভিযান – তারনেতৃত্ব দিতে হবে আপনাকে। একবার মানুষকে RupayCard কীভাবে ব্যবহার করতে হয়, এটা আপনি শিখিয়ে দেবেন,তবে গরীব মানুষ আপনাকে আশীর্বাদ করবে। এক মাসের মধ্যেই আমরা বিশ্বে একনতুন, আধুনিক হিন্দুস্থান হয়ে আত্মপ্রকাশ করতে পারি আর এই কাজ আপনি আপনার মোবাইলফোনের মাধ্যমে করতে পারেন। রোজ দশটা বাড়িতে গিয়ে করতে পারেন, রোজ দশটা পরিবারকে এইব্যবস্থায় যুক্ত করে করতে পারেন। আমি আপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি – আসুন, শুধুসমর্থন নয়, আমরা এই পরিবর্তনের সৈনিক হই আর পরিবর্তন ঘটিয়ে ছাড়ি। কেনিয়াউদ্যোগ নিয়ে M-PESA নামে এক মোবাইল ব্যবস্থা দাঁড় করিয়েছে, প্রযুক্তির ব্যবহার করেছে, M-PESA নাম দিয়েছে আর আজআফ্রিকার এই এলাকায় কেনিয়াতে পুরো ব্যবসা-বাণিজ্য এই অভিমুখে পরিবর্তিত হওয়ারপ্রস্তুতি নিয়ে ফেলেছে। এক বড় বিপ্লব ঘটিয়েছে এই দেশ। আমার তরুণরা, আমি ফের একবার,আবারও একবার প্রবল আগ্রহ নিয়ে আপনাদের বলছি যে আপনারা এই অভিযানকে এগিয়ে নিয়েচলুন। প্রত্যেকটা স্কুল, কলেজ, ইউনিভার্সিটি, এন-সি-সি, এন-এস-এস’কে গোষ্ঠীবদ্ধভাবে, ব্যক্তিগত স্তরে এই কাজ করার জন্য আমন্ত্রণ জানাচ্ছি আপনাদের। আমরা এইব্যবস্থাকে এগিয়ে নিয়ে যাই। দেশের পরম সেবার সুযোগ পেয়েছি আমরা, সুযোগ হারানো উচিৎনয়। প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমাদের দেশের এক মহান কবি শ্রী হরিবংশরাই বচ্চনের আজ জন্মজয়ন্তী আর আজ হরিবংশরাই-জীর জন্মদিনে শ্রী অমিতাভ বচ্চন ‘স্বচ্ছতাঅভিযান’-এর জন্য আহ্বান জানিয়েছেন। আপনারা দেখেছেন যে এই সময়ের সবথেকে জনপ্রিয়শিল্পী অমিতাভ-জী স্বচ্ছতা অভিযানকে খুব পরিশ্রম করে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছেন। আমি হরিবংশ রাই-জীকে শ্রদ্ধাপূর্বক নমস্কার জানাই। ‘মন কী বাত’-এর সঙ্গেএইভাবে যুক্ত হওয়ার জন্য আর স্বচ্ছতার কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য শ্রীযুক্তঅমিতাভ বচ্চনকে ধন্যবাদ জানাই। আমার প্রিয় দেশবাসী, এখন তো ‘মনকী বাত’-এর মাধ্যমে আপনাদের চিন্তা, আপনাদের ভাবনা পত্রের মাধ্যমে, ‘মাই গভ’-এ,‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’-এ পৌঁছচ্ছে আর আপনাদের সঙ্গে জুড়ে রাখছে আমাকে। এখন তো বেলাএগারোটার সময় ‘মন কি বাত’ প্রচারিত হয় কিন্তু এই সম্প্রচার শেষ হওয়ার পর পরইপ্রাদেশিক ভাষায় এটা শোনানোর ব্যবস্থা শুরু হতে চলেছে। আমি আকাশবাণীর প্রতিকৃতজ্ঞ, এই নতুন উদ্যোগ যে ওঁরা নিয়েছেন, যাতে যে সব জায়গায় হিন্দি ভাষার প্রচলননেই, সেখানেও এর সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ পাবেন দেশবাসীরা। আপনাদের সবাইকে অনেকঅনেক ধন্যবাদ! জার্মানি,স্পেন, রাশিয়া এবং ফ্রান্স সফরের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী একবিবৃতিতে বলেছেন : “জার্মানচ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেলের আমন্ত্রণে চতুর্থ ভারত-জার্মানি আন্তঃসরকারিপরামর্শ বৈঠকে (আইজিসি) অংশগ্রহণের উদ্দেশে ২৯ ও ৩০ মে, ২০১৭-তে আমি জার্মানি সফরকরব। জার্মানিযুক্তরাষ্ট্রীয় সাধারণতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট মাননীয় ডঃ ফ্র্যাঙ্ক-ওয়াল্টারস্টেনমায়ারের সঙ্গেও এক সাক্ষাৎকারে আমি মিলিত হব। সরকারিভাবেআমি স্পেন সফর করব ৩০-৩১ মে, ২০১৭ তারিখে। প্রায় তিন দশক পরে এটিই হবে একজন ভারতীয়প্রধানমন্ত্রীর প্রথম ঐ দেশ সফর। এইসফরকালে আমি সাক্ষাৎকারে মিলিত হব মাননীয় রাজা চতুর্থ ফিলিপের সঙ্গে। আগামী৩১ মে প্রেসিডেন্ট ম্যারিয়ানো রেজয়-এর সঙ্গে বৈঠকের জন্য আমি আগ্রহের সঙ্গেঅপেক্ষা করছি। বিশেষত অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক কর্মপ্রচেষ্টা প্রসারের উপায়উদ্ভাবনের লক্ষ্যে এবং সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা সহ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের সাধারণউদ্বেগের বিষয়গুলিতে সহযোগিতাকে জোরদার করে তুলতে এক আলোচনা-বৈঠকে মিলিত হব আমরা। দ্বিপাক্ষিকবাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্পর্ককে গভীরতর করে তোলার সম্ভাবনা রয়েছে প্রচুর। পরিকাঠামো,স্মার্ট নগরী, ডিজিটাল অর্থনীতি, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি, প্রতিরক্ষা এবংপর্যটন সহ বিভিন্ন ভারতীয় প্রকল্পে স্পেনের শিল্প সংস্থাগুলির সক্রিয় অংশগ্রহণআমরা প্রত্যাশা করি। স্পেনেরশিল্প সংস্থাগুলির শীর্ষ স্থানীয় কর্তা-ব্যক্তিদের সঙ্গেও আমি আলোচনায় মিলিত হব এবংআমাদের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিতে অংশীদারিত্বের জন্য আমি তাঁদের উৎসাহিত করব। আমারএই সফরসূচির পাশাপাশি অনুষ্ঠিত হবে ভারত-স্পেন সিইও ফোরামের প্রথম বৈঠকটি। ভারত ওস্পেনের মধ্যে অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যেতাদের মূল্যবান প্রস্তাব ও সুপারিশগুলির জন্য আমি অপেক্ষা করে রয়েছি। অষ্টাদশভারত-রাশিয়া বার্ষিক শীর্ষ বৈঠক উপলক্ষে আগামী ৩১ মে থেকে ২ জুন পর্যন্ত আমি সফরকরব রাশিয়ার সেন্ট পিটার্সবার্গ। ২০১৬-রঅক্টোবর মাসে গোয়ায় অনুষ্ঠিত আমাদের শেষ শীর্ষ বৈঠকের আলোচনাকে আরও এগিয়ে নিয়েযাওয়ার লক্ষ্যে আগামী ১ জুন এক বিশদ আলোচনা-বৈঠকে মিলিত হব প্রেসিডেন্ট পুতিনেরসঙ্গে । পরেরদিন,প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আমি ভাষণ দেব সেন্ট পিটার্সবার্গ আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিকফোরামে (এসপিআইইএফ)। এবছর এই মঞ্চটিতে সম্মানিত অতিথিরূপে উপস্থিত থাকার জন্যতাদের আমন্ত্রণকে আমি সাধুবাদ জানাই। সফরেরশুরুতেই আমি পিসকারভ্‌সকয় সমাধি ক্ষেত্রে গিয়ে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাব তাঁদের উদ্দেশে,যাঁরা লেনিনগ্রাদ অবরোধের সময় তাঁদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। দু’দেশেরকূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের এই বিশেষবছরটিতে সেন্ট পিটার্সবার্গ পরিদর্শনের জন্য আমি আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছি। আমিফ্রান্স সফর করব ২-৩ জুন, ২০১৭ তারিখে। ঐ দেশ সফরকালে নবনির্বাচিত ফরাসীপ্রেসিডেন্ট মাননীয় মিঃ ইমানুয়েল ম্যাকঁরের সঙ্গে সরকারি পর্যায়ে আমি এক বৈঠকেমিলিত হব। ফ্রান্সহল আমাদের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ কৌশলগত অংশীদারদের অন্যতম। প্রেসিডেন্টম্যাকঁর-এর সঙ্গে বৈঠকে মিলিত হয়ে পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে আলোচনার জন্যআমি অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি। ফ্রান্সহল আমাদের নবম বৃহত্তম বিনিয়োগ সহযোগী এবং প্রতিরক্ষা, মহাকাশ, পরমাণু ওপুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি, নগরোন্নয়ন এবং রেলের মতো ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের উন্নয়নপ্রচেষ্টার এক বিশেষ অংশীদার। জম্মু ও কাশ্মীরে ৪৮ জন নবনির্বাচিত সরপঞ্চ আজ নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দেন অল জম্মু ও কাশ্মীর পঞ্চায়েত সম্মেলনের সভাপতি শফিক মীর। প্রতিনিধিরা জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তিপূর্ণ ও সফল পঞ্চায়েত নির্বাচনের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী নবনির্বাচিত প্রতিনিধিদের তাঁর শুভেচ্ছা জানান। পঞ্চায়েতি রাজ মডেল’কে সফল করার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের পূর্ণ সমর্থনের কথাও তিনি ব্যক্ত করেন। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের অ্যাম্পিথিয়েটারে ১৮ তারিখ প্রধানমন্ত্রী এক অনুষ্ঠানে ৫০০ কোটি টাকারও বেশি বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন বা শিলান্যাস করবেন। প্রধানমন্ত্রী যে সমস্ত প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন, তার মধ্যে রয়েছে- পুরানো কাশীর জন্য একটি সুসংহত বিদ্যুৎ উন্নয়ন প্রকল্প, বিনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে অটল ইনক্যুবেশন সেন্টার। এছাড়াও, এই বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি একটি আঞ্চলিক চক্ষুরোগ চিকিসাৎ কেন্দ্রের শিলান্যাস করবেন এবং এক জনসভায় ভাষন দেবেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব পরিক্রমারত ভারতীয় নৌ-জলযান আইএনএসভি তারিণীর নাবিক ওকর্মীদের সঙ্গে আজ ভিডিও কল-এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী আইএনএসভি’র নাবিক ও কর্মীদের দেশবাসীর পক্ষ থেকে শুভদীপাবলির শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। তিনি তাঁদের অভিযানের সাফল্যও কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গত ১৬ আগস্ট, ২০১৭’তে আইএনএসভি তারিণীরনাবিক ও কর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন তাঁদের ২২ হাজার ১০০ নটিক্যাল মাইল দীর্ঘবিশ্ব পরিক্রমায় সামিল হওয়ার ঠিক আগে। আইএনএসভি তারিণী এখন তাদের প্রথমগন্তব্যস্থল অস্ট্রেলিয়ার ফ্রিম্যান্টেলের কাছাকাছি আছে আর আগামী ২২ অক্টোবর ৪হাজার ৭৭০ নটিক্যাল মাইল সফর শেষে তাদের সেখানে পৌঁছনোর কথা। প্রধানমন্ত্রী ঐ জলযানের দুই নাবিক লেঃ কমোডর বর্তিকা যোশী আর লেঃ পায়েলগুপ্তার আসন্ন জন্মদিন উপলক্ষে তাঁদের আগাম শুভেচ্ছাও জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ স্টকহোম-এ ভারতীয় সম্প্রদায়ের এক সমাবেশে বক্তব্য রাখেন। শ্রী মোদী বলেন, এক বিরাট রূপান্তর প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ভারত বর্তমানে এগিয়ে চলেছে। ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ এই মন্ত্রকে সম্বল করে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেছে। গত চার বছরে এক উন্নত এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক ভারত গঠনের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে ভারত সরকার। এর সুবাদে বিশ্বের বিভিন্ন দেশ এখন যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসের সঙ্গেই তাকিয়ে রয়েছে ভারতের দিকে। এই প্রসঙ্গে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে ভারতের মানবতাবাদী কর্মপ্রচেষ্টা, ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ, আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা গোষ্ঠী গঠন এবং এমটিসিআর, ওয়াশেনার ব্যবস্থা এবং অস্ট্রেলীয় গোষ্ঠীতে সদস্যপদের মতো ঘটনার কথা উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, প্রযুক্তি ক্ষেত্রে, বিশেষত মহাকাশ কর্মসূচি ক্ষেত্রে ভারতের কারিগরি দক্ষতা স্বীকৃতি লাভ করেছে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিটাল পরিকাঠামোর প্রসারের মধ্য দিয়ে ভারতের সরকার ও নাগরিকদের মধ্যে নিরন্তর যোগাযোগ গড়ে উঠেছে। অন্যদিকে, প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহারের মাধ্যমে বৃদ্ধি পেয়েছে স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা। তাই, সরকারের কাছে সহজেই পৌঁছে যাওয়ার বিষয়টি এখন আর কোন সুযোগ মাত্র নয়, বরং তা একটি সহজ স্বাভাবিক ঘটনা। এই প্রসঙ্গে অপ্রয়োজনীয় ফাইল বাতিল বলে ঘোষণা, বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলা, জিএসটি রূপায়ণ, প্রত্যক্ষ সুফল হস্তান্তর এবং ‘উজ্জ্বলা’ যোজনার মাধ্যমে রান্নার গ্যাসের সুযোগ সম্প্রসারণের মতো কর্মসূচিগুলির কথা উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, ‘মুদ্রা’ যোজনার মাধ্যমে শিল্পোদ্যোগীদের কাছে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার সম্প্রসারণ ঘটেছে। এই কর্মসূচির মোট সুফলভোগীদের ৭৪ শতাংশই হলেন মহিলা। প্রসঙ্গত, ‘অটল উদ্ভাবন মিশন’, ‘দক্ষ ভারত’ এবং ‘স্টার্ট আপ’ কর্মসূচি প্রসঙ্গেও বক্তব্য রাখেন তিনি। এছাড়াও, জীবনযাত্রার মানকে আরও সহজ করে তোলার ওপরও সরকার বিশেষ জোর দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বুধবার নিম্নলিখিত বিষয়ে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে : “১৯৭১-এরযুদ্ধে যাঁরা সাহসিকতার সঙ্গে সংগ্রাম করেছিলেন, তাঁদের বীরত্ব ও আত্মোৎসর্গের কথাস্মরণ করার একটি যোগ্য উপলক্ষ হল ‘বিজয় দিবস’। তাঁদের সকলের প্রতি আমি সম্মান ওঅভিবাদন জানাই।” গতকাল সন্ধ্যায় যোগাযোগ ক্ষেত্র সহ ডিজিটাল ও গ্রামীণ পরিকাঠামোর অগ্রগতি খতিয়ে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই লক্ষ্যে পৌঁছতে তিনি সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলিকে নির্দেশ দেন কাজের অগ্রগতির ওপর বিশেষ নজর রাখতে। কল ড্রপের সমস্যায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে এ ব্যাপারে কি কি ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে সে ব্যাপারে তিনি জানতে চান সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছ থেকে। তিনি বলেন, এই সমস্যায় বিপাকে পড়েন সাধারণ মানুষ। তাই, তা দূর করে ভবিষ্যতে পরিসংখ্যানগত তথ্য সংগ্রহের ক্ষেত্রে কোন রকম সঙ্কট যাতে দেখা না দেয় তা নিশ্চিত করতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। সৌরশক্তিচালিত প্রকল্পগুলির অগ্রগতি সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রী খোঁজখবর নেন, বিশেষ করে, রেল স্টেশন ও বিমানবন্দরগুলিতে এ ধরণের প্রকল্পের হালহকিকৎ সম্পর্কে তিনি আধিকারিকদের কাছ থেকে জানতে চান। রেল বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের বিষয়টিকে ত্বরান্বিত করার নির্দেশ দেন তিনি। এছাড়া, নেপাল, ভুটান এবং বাংলাদেশের সঙ্গে সড়ক সংযোগ গড়ে তোলার প্রকল্পগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (মঙ্গলবার ২৯ মে) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশ জুড়ে ‘মুদ্রা যোজনা’র সুফলভোগীদের সঙ্গে মত-বিনিময় করেন। সরকারি প্রকল্প ও কর্মসূচিগুলির সুফলভোগীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর এটি দ্বিতীয় আলাপচারিতা। এই যোজনার সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ে সন্তোষপ্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুদ্রা যোজনা বিভিন্ন ধরনের কর্মসংস্হানের উৎস হয়ে উঠেছে। তিনি আরও বলেন, এই কর্মসূচির মাধ্যমে সুদ কারবারি ও দালালদের জাল থেকে শিল্পোদ্যোগীরা রেহাই পেয়েছেন। যুব সম্প্রদায়, মহিলা এবং যারা নিজস্ব ব্যবস্হা শুরু বা ব্যবসার পরিধি বাড়াতে চান তাদের জন্য এই কর্মসূচি নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত ৫ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটি টাকা মূল্যের ১২ কোটি ঋণ দেওয়া হয়েছে। আজকেরসম্মেলনে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের ছ’টি দল পুষ্টি, শিক্ষা, প্রাথমিক পরিকাঠামো,কৃষি, জলসম্পদ, উগ্রপন্থা দমন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং দক্ষতা বিকাশের মতোবিষয়গুলির ওপর তাঁদের উপস্থাপনা পেশ করে। শ্রী মোদীবলেন, দেশের কয়েকটি অঞ্চলের আপেক্ষিক অনগ্রসরতা ঐ অঞ্চলগুলির অধিবাসীদের প্রতি একধরনের অবিচার। প্রধানমন্ত্রীতাঁর ভাষণে জন ধন যোজনা, শৌচাগার নির্মাণ, গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণইত্যাদি প্রসঙ্গেরউল্লেখ করে বলেন যে আমরা যদি দৃঢ় সঙ্কল্পবদ্ধ হই, তাহলে আমাদের দেশে কোন কিছুইঅসম্ভব নয়। মাটি পরীক্ষার মতো সম্পূর্ণ একটি নতুন উদ্যোগের ক্ষেত্রে যে সাফল্যঅর্জিত হয়েছে, দৃষ্টান্তস্বরূপ তারও উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদীবিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে ভারতে বর্তমানে সুযোগ ও সম্ভাবনার কোন অভাব নেই। এইপ্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলার কর্মসূচিটিরও। এইসাফল্যকে সরকারি আধিকারিক এবং ‘টিম ইন্ডিয়া’র বিশেষ কৃতিত্ব বলে বর্ণনা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীবলেন, সমস্ত কিছুর সমাধান শুধুমাত্র ওপর মহল থেকেই আশা করা ঠিক নয়। এই কারণে দেশেরসাধারণ মানুষদের অবদানও কোন অংশে কম নয়। তাঁর এই বক্তব্যের সমর্থনে আজকেরউপস্থাপনায় সংশ্লিষ্ট সকলের চিন্তাভাবনার স্বচ্ছতা এবং সঙ্কল্প ও অঙ্গীকারে অবিচলথাকার বিষয়টিরও সপ্রশংস উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদীবলেন, আঞ্চলিক ক্ষেত্রে ভারসাম্যহীনতাকে অনির্দিষ্টকাল ধরে চলতে দেওয়া যায় না। সুতরাং,অনগ্রসর জেলাগুলির উন্নয়ন একান্ত জরুরি। এই অঞ্চলগুলি সম্পর্কে নেতিবাচকচিন্তাভাবনা দূর করার জন্য যে যে সরকারি কর্মসূচিতে সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তাঅনুধাবন ও উপলব্ধি করা বিশেষভাবে প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর মতে, নেতিবাচকমানসিকতাকে আশাবাদে রূপান্তরিত করাই হবে কর্মপ্রচেষ্টার প্রথম ধাপ। প্রধানমন্ত্রীবলেন, উন্নয়নের লক্ষ্যেজন-আন্দোলনের মূলে রয়েছে মানসিক মিলন বা সমন্বয়। এই কারণেজনসাধারণকে কর্মকাণ্ডের সঙ্গে যুক্ত করতে যথাযথ পদ্ধতি অনুসরণ করা উচিৎ বলে মনেকরেন তিনি। প্রসঙ্গত, ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এর দৃষ্টান্ত তুলে ধরে এইভাবেই অনগ্রসরজেলাগুলি সম্পর্কে মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বান জানান তিনি। উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রাপূরণে ইতিবাচক মানসিকতা এবং আশাবাদের গুরুত্ব অনস্বীকার্য বলে মনে করেনপ্রধানমন্ত্রী। এপ্রিলমাসের মধ্যে ভালো কাজ হয়েছে, এই ধরনের একটি জেলা তিনি ব্যক্তিগতভাবে ঘুরে দেখারওইচ্ছা প্রকাশ করেন। দশম শিখগুরু গুরু গোবিন্দ সিংজির ৩৫০তম প্রকাশ পর্বে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনকরেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক ব্যতিক্রমী সাহসিকতা এবং গভীর প্রজ্ঞার বহিঃপ্রকাশ ঘটেছিল তাঁরমধ্যে। তাঁর মহান চিন্তাভাবনা এবং দুঃসাহসিক কর্মপ্রচেষ্টা বহু প্রজন্ম ধরেইজনসাধারণকে অনুপ্রাণিত করে যাবে। সমতাই শক্তি – এই নীতিতে বিশ্বাসী ছিলেন শ্রী গুরু গোবিন্দ সিংজি। সিওল শান্তি পুরস্কার সাংস্কৃতিক প্রতিষ্ঠানের সভাপতি শ্রী কুয়োন ই-হিয়ক জাতীয় বিধানসভার অধ্যক্ষ্য শ্রী মুন হি-সাং সংস্কৃতি মন্ত্রী শ্রী ডো জং-হোয়ান বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ, সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। এই পুরস্কারটি ভারত পাচ্ছে সেই সাফল্যর জন্য যা গত ৫ বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ১৩০ কোটি ভারতীয়র শক্তি ও দক্ষতার ক্ষমতার জোরে অর্জিত হয়েছে। আর তাই, তাদের পক্ষ থেকে আমি বিনীতভাবে এই পুরস্কারটি গ্রহণ করছি এবং আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। এই পুরস্কার সেই ভাবনারই স্বীকৃতি যা বসুদেব কুটুম্বকম, যার মানে সমগ্র বিশ্ব একটি পরিবার এই বার্তাটি বহন করে। আকাশের মহাকাশের সর্বস্ব যেন শান্তি বিরাজ করে, আমাদের গ্রহের, প্রকৃতির সর্বস্হানে যেন চিরশান্তি বিরাজ করে। এবং, এই পুরস্কারটি সেই ব্যক্তিদের দেওয়া হয় যাঁরা সবসময় সমাজের কল্যাণের বিষয়টিকে নিজস্ব আশা-আকাঙ্খার থেকে বেশি গুরুত্ব দিয়ে থাকেন। আমি আরও সম্মানিত বোধ করছি এই কারণে যে এই পুরস্কার এই বছর আমাকে প্রদান করা হচ্ছে যখন আমরা মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী পালন করছি। সিওল শান্তি পুরস্কার ১৯৮৮তে সিওলে আয়োজিত ২৪তম গ্রীষ্মকালীন অলিম্পিকের সাফল্য ও উদ্দীপনার প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠা করা হয়। ভারত সেই ক্রীড়াকে খুব ভালোভাবে মনে রেখেছে। কারণ সেটি সমাপ্ত হয় মহাত্মা গান্ধীর জন্মবার্ষিকীতে। সেই ক্রীড়ার আয়োজন কোরিয়ার সংস্কৃতির সেরা দিকগুলি তথা কোরিয়ার উষ্ম আতিথিয়তা, এবং কোরিয়ার অর্থনীতির সাফল্যকে তুলে ধরেছিল। এবং, ভোলা যাবে না, সেই বছরের অলিম্পিক সারা বিশ্বের ক্রীড়া ক্ষেত্রে একটি নতুন ক্রীড়াশক্তির বিকাশকে তুলে ধরেছিল। তাছাড়া সেই বছরের গেমস বিশ্ব ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক নির্দেশকও ছিল। ১৯৮৮ সালের অলিম্পিক্স এমন একটি সময় অনুষ্ঠিত হয়, যখন সারা পৃথিবীতে বহু পরিবর্তন হচ্ছিল। ইরান-ইরাক যুদ্ধ সবে শেষ হয়েছে। আফগানিস্হানের পরিস্হিতি সংক্রান্ত জেনেভা চুক্তি সেবছরই গোড়ার দিকে স্বাক্ষরিত হয়েছিল। স্বাস্হ্য পরিষেবা ও শিক্ষা ক্ষেত্রে সুফল পাওয়া যাচ্ছে। এবং ভারত তার কাজ করে চলেছে। আমরা ভারতের জনসাধারণ- অর্থাৎমানবজাতির এক-ষষ্ঠাংশ জনসংখ্যার ভালো থাকার মানোন্নয়ন ঘটাতে কাজ করছি। ভারত আজকে সারা পৃথিবীর মধ্যে একটি দ্রুত উন্নয়নশীল বৃহৎ অর্থনীতি হয়েছে, যার অর্থনৈতিক ভিতগুলি দৃঢ় রয়েছে। আমাদের চালু করা বড় মাপের অর্থনৈতিক পরিবর্তনগুলির জন্য এটি সম্ভব হয়েছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘স্কিল ইন্ডিয়া’, ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’, ‘ক্লিন ইন্ডিয়া’-র মতো ফ্ল্যাগশিপ উদ্যোগগুলি লক্ষ্যণীয় আর্থ-সামাজিক বিকাশসাধনে অবদান রেখেছে। আমরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকণ, ঋণ পাওয়ার সুযোগ, ডিজিটাল লেনদেন, শেষ মাইল পর্যন্ত যোগাযোগ ব্যবস্হা, এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি উদ্যোগগুলিকে সহায়তার ওপর আমরা গুরুত্ব আরোপ করেছি, যাতে সারা দেশের বিকাশ ছড়িয়ে পড়ে এবং ভারতের জনসাধারণকে সমৃদ্ধ করে তুলতে পারে। স্বচ্ছ ভারত অভিযান ভারতকে পরিচ্ছন্ন করছে ; ২০১৪ সালে ৩৮ শতাংশের মতো মানুষকে নিয়ে একটি স্বাস্হ্যবিধি কর্মসূচি থেকে শুরু করে সংখ্যাটি এখন ৯৮ শতাংশ গিয়ে দাঁড়িয়েছে ! উজ্জ্বলা যোজনা পরিশ্রুত রান্নার জ্বালানী ব্যবহারের মাধ্যমে গ্রামীণ মহিলাদের জীবনকে উন্নত করেছে ; আয়ুষ্মান ভারত ৫০ কোটি দরিদ্র্য ও নিপীড়িত মানুষকে স্বাস্হ্য পরিষেবা ও বিমার সুযোগ দিচ্ছে ; এবং, নানা উদ্যোগের মাধ্যমে, আমরা সার্বিক বিকাশ ঘটিয়ে চলেছে এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্হায়ী উন্নয়নের লক্ষ্যগুলি পূরণের দিকে ভারত এগিয়ে যাচ্ছে। আমাদের সব প্রয়াসে, আমাদের চালনা করে মহাত্মা গান্ধীর শিক্ষা যাতে বলা হয়েছে আমাদের দেখা দরিদ্র্যতম এবং দুর্বলতম মানুষের মুখটি স্মরণ করতে এবং নিজেকে প্রশ্ন করতে যে, যে পদক্ষেপটি গ্রহণের পরিকল্পনা করছি সেটা সেই ব্যক্তিকে সাহায্য করবে কি না। তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে, আমাদের বিকাশ ও সমৃদ্ধি নিশ্চিতভাবে বিশ্বের বিকাশ ও উন্নতিতে অবদান রাখবে। আমরা একটি শান্তি ও স্হায়িত্বপূর্ণ এবং অর্থনৈতিকভাবে সংযুক্ত বিশ্ব গড়ে তুলতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। ভারত, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের একজন দায়িত্বপূর্ণ সদস্য হিসেবে, জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে আমাদের ঐক্যবদ্ধ যুদ্ধের সামনের সারিতে রয়েছে। কম মাত্রায় কার্বন নিঃসরণের ইতিহাস থাকা সত্ত্বেও, ভারত জলবায়ু পরিবর্তনের বিরুদ্ধে বিশ্বজনীন যুদ্ধে সক্রিয় ভূমিকা পালন করে চলেছে। দেশের মধ্যে এই কর্মসূচি পালন করতে কার্বন নিঃসরণ কমানো, বনাঞ্চলের প্রসার এবং পরম্পরাগত কার্বন নিঃসরণ করে যে জ্বালানীগুলি সেগুলির পরিবর্তে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির যোগান সামগ্রী ব্যবহারের জন্য একটি জাতীয় কর্মপরিকল্পনার সূচনা করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক স্তরে, আমরা একইরকম ভাবনাচিন্তা করে যে দেশগুলি তাদের সঙ্গে অংশিদারিত্ব করে আন্তর্জাতিক সৌর মৈত্রীর সূচনা করেছি, যার লক্ষ্য পরিশ্রুত ও অবাধ সৌরশক্তিকে জীবাশ্ম জ্বালানীর বিকল্প হিসেবে কাজে লাগানো। আমরা রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষা কার্যকলাপের জন্য সর্বাধিক সেনা পাঠানো দেশগুলির মধ্যে পড়ি। এবং, কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলে শান্তি বজায়ের কাজে অবদান রাখতে পেরে আমরা গর্বিত। সাহায্যের প্রয়োজন থাকা দেশগুলিকে আমরা সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছি এবং মানবিক কাজ ও দুর্যোগে ত্রাণকার্যে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করেছি। সংঘর্ষপ্রবণ এলাকাগুলিতে আমরা অভিযান চালিয়েছি এবং শুধু ভারতীয়দেরকেই নয় বহু অন্যান্য দেশের নাগরিকদেরকেও উদ্ধার করেছি। অন্যান্য উন্নয়নশীল দেশগুলির উন্নয়নের কাজে একটি সক্রিয় ও বোঝদার অংশীদার হিসেবে কাজ করেছি, যেখানে আমরা দেশগুলির কাঠামোগত ও সামাজিক পরিকাঠামোর উন্নতিসাধনের মূল নীতি গ্রহণ করেছি। এই প্রয়াসগুলির মাধ্যমে, আমরা চাই নিশ্চিত করতে যাতে বিশ্বায়ন ও সংযুক্ত পৃথিবীর সুযোগ-সুবিধাগুলি সকলে সমানভাবে উপভোগ করতে পারে। গত কয়েক বছরে আমার সরকার বিভিন্ন মহাদেশে নতুন ভাবে আদান-প্রদান ও নতুন নতুন অংশীদারিত্ব স্হাপন করেছে। পূর্ব এশিয়ার ক্ষেত্রে, আমাদের পূবের জন্য কাজ কর নীতির আওতায় কোরিয়া সাধারণতন্ত্র সহ এই অঞ্চলের দেশগুলির সঙ্গে আমাদের আদান-প্রদানকে নতুন সংজ্ঞা দিয়েছি। রাষ্ট্রপতি মুন-এর নতুন দক্ষিণী নীতিতে আমাদের এই ভাবনাচিন্তার প্রতিধ্বনি শুনতে পেয়ে আমি আনন্দবোধ করছি। ভারত বহুযুগ ধরে শান্তিময় স্হান। ভারতের মানুষ হাজার হাজার বছর ধরে শান্তি ও সঙ্গতিপূর্ণ সহাবস্হানের রীতি অভ্যাস করে চলেছে। শয়ে শয়ে ভাষা ও উপভাষা বহু রাজ্য ও ধর্ম নিয়ে ভারত বিশ্বের মধ্যে একটি সবচেয়ে বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ হিসেবে গর্ববোধ করে। আমরা গর্বিত যে আমাদের দেশে প্রত্যেক ধর্ম, বিশ্বাস ও সম্প্রদায়ের মানুষজন সমৃদ্ধ হতে পারে। আমরা গর্বিত যে আমাদের সমাজ কেবল সহনশীলতাভিত্তিক নয়, বিভিন্নতা ও বৈচিত্র্য উদযাপন করে। কোরিয়ার মতো, ভারতও সীমান্ত পারের শত্রুতার কষ্ট ভোগ করেছে। শান্তিপূর্ণ উন্নয়নের প্রতি আমাদের প্রয়াস বহুবার সীমান্তপারের সন্ত্রাসের দ্বারা বিঘ্নিত হয়েছে। যদিও ভারত ৪০ বছরেরও বেশি সময় ধরে সীমান্ত পারের সন্ত্রাসের শিকার হয়েছে, প্রত্যেকটি দেশ আজ এই গুরুতর বিপদের সম্মুখীন হচ্ছে যাতে কোনও সীমান্তকেই মানা হচ্ছে না। এখন সকলে যারা মানবতায় বিশ্বাস করেন, তাদের একত্রিতভাবে হাত মিলিয়ে সন্ত্রাসবাদী নেটওয়ার্কগুলিকে এবং তাদের অর্থযোগান, সরবরাহের চ্যানেলগুলি সম্পূর্ণভাবে মুছে ফেলতে ও সন্ত্রাসবাদী মতবাদ ও প্রচার রোধ করার সময় এসেছে। কেবল এটি করেই আমরা ঘৃণাকে ঐক্যে ও ধ্বংসকে উন্নয়নে পরিণত এবং হিংসা ও প্রতিশোধের ছবিকে শান্তির পোস্টকার্ডে রূপান্তরিত করতে পারি। গত বছরে কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলে যে শান্তির প্রতি প্রগতি হয়েছে, তা খুবই আনন্দদায়ক। পারস্পরিক অবিশ্বাস এবং ডিপিআরকে ও আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের মধ্যে সন্ধিগ্ধতার ইতিহাস কাটিয়ে উঠতে এবং তাদেরকে আলোচনার টেবিলে একসঙ্গে বসাতে রাষ্ট্রপতি মুন যে ভূমিকা পালন করেছেন, তারজন্য তিনি প্রশংসার অধিকারী। এটি কোনও ক্ষুদ্র সাফল্য নয়। আমি আবারও উল্লেখ করছি দুটি কোরিয়ার মধ্যে এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ডিপিআরকে-র মধ্যে চলতি আলোচনার প্রক্রিয়াকে আমার সরকার জোরালো সমর্থন করে। কোরিয়ার বিখ্যাত প্রবাদে যেমন বলে : “ভালো ভাবে শুরু করাই অর্ধেক যুদ্ধ” আমি সম্পূর্ণ বিশ্বাস রাখি যে কোরিয়ার মানুষজনের বিরামহীন প্রচেষ্টার ফলে, কোরিয়া উপদ্বীপ অঞ্চলে শীঘ্রই শান্তি বিরাজ করবে। বন্ধুগণ, ১৯৮৮ অলিম্পিকের থিম গানটি থেকে একটি অংশ উল্লেখ করে আমি শেষ করতে চাই, কারণ তা আমাদের সবার আরও ভালো আগামীদিনের আশা-আকাঙ্খাকে যথাযথভাবে তুলে ধরে : হাতে হাত, আমরা সারাটা ভূমি জুড়ে দাঁড়িয়ে রয়েছি, আমরা এই পৃথিবীকে আরও ভালো বাসযোগ্য স্হান করতে পারি। তাঁর কার্যকালসফল ও উদ্দীপনাময় হয়ে উঠুক এই শুভেচ্ছা জানাই। এইউপলক্ষে প্রধানমন্ত্রীর কাছে পাঠানো এক বার্তায় রাষ্ট্রপতি বলেছেন, “আপনারজন্মদিনে জানাই আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। এইদিনটির মধ্য দিয়ে আপনার এবং জাতির জীবনে আরও বেশি সাফল্যের একটি বছরের সূচনা হোক। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মুম্বাইয়ে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ে জীবনহানির ঘটনায় দুঃখ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীবলেছেন, “মুম্বাইয়ে বাড়ি ভেঙে পড়ার ঘটনা দুঃখজনক। মহামান্যস্যুইস ফেডারেশনের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের প্রয়াণ দিবসে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাজানিয়েছেন। এক বার্তায়তিনি বলেছেন, “নির্বাণ দিবসে আমি ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের প্রতি শ্রদ্ধায় প্রণতহই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল বুদ্ধগয়ায় যাচ্ছেন। এই সফরে তিনি মহাবোধি মন্দির এবং পুণ্য বোধিবৃক্ষ পরিদর্শন করবেন। তিনি এই উপলক্ষে, ‘চেটিয় চারিকা’ ‘সত্যের অন্বেষণ ও তীর্থযাত্রা’ শীর্ষক এক প্রদর্শনীরও উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রীর বুদ্ধগয়া সফর দ্বন্দ্ব পরিহার ও পরিবেশ সচেতনতা সম্পর্কে হিন্দু-বৌদ্ধ প্রয়াস সমবাদের তৃতীয়দিনে ঐ অনুষ্ঠানে আগত প্রতিনিধিদের বুদ্ধগয়া সফর উপলক্ষেই। ১.নয়া দিল্লিতে ৬ অক্টোবর ২০১৭ তারিখে ভারত ও ইউরোপিয়ানইউনিয়নের (ই.ইউ.) ৩.নেতৃত্বগণ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য ত্রয়োদশ ভারত-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন শিখরসম্মেলনে গৃহীত ‘ভারত-ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন এজেন্ডা ফর অ্যাকশন ২০২০’ রূপায়ণের পথে যেঅগ্রগতি, তা নিয়ে সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন| ৪.নেতৃত্বগণ ভারত-ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে বাণিজ্য সহযোগিতাকে গভীর করে, দুই দিকেইবিনিয়োগ প্রবাহ বৃদ্ধি করে এবং জলবায়ু পরিবর্তন, দেশান্তর ও শরণার্থী সমস্যার মতবৈশ্বিক ও আঞ্চলিক বিষয়গুলো নিয়ে সংলাপ ও সংযুক্তিকে আরও বিস্তৃত করে এবং এইক্ষেত্রগুলোতে দ্বিপাক্ষিক ও বহুপাক্ষিক সহযোগিতাকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নিয়েকৌশলগত অংশীদারিত্ব কে ফলাফল-ভিত্তিক ও পারস্পরিক লাভজনক পদ্ধতিতে আরও শক্তিশালীকরার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়েছেন| ৫.নেতৃত্বগণ ভারতে বিভিন্ন প্রধান ক্ষেত্রে, বিশেষ করে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা ওপুনর্নবীকরণ শক্তির ক্ষেত্রে ইউরোপিয়ান ইনভেস্টমেন্ট ব্যাংকের শক্তিশালীঅংশগ্রহণের প্রশংসা করেন| ১৩.উভয় পক্ষ ভারত-ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের মধ্যে পৃথিবী পর্যবেক্ষণ সহ মহাকাশ ক্ষেত্রেসহযোগিতা বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে| ১৭.ভারত ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন ইরানের পারমাণবিক সমস্যায় ‘জয়েন্ট কম্প্রেহেনসিভ প্ল্যানঅফ অ্যাকশন’কে (জে.সি.পি.ও.এ.) ১৮.উভয় পক্ষ গত ৩ সেপ্টেম্বর ২০১৭ তারিখে ডি.পি.আর.কে. ২০.মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি প্রক্রিয়ায় ভারত ও ইউরোপিয়ান ইউনিয়ন মধ্যপ্রাচ্যের শান্তি ওস্থায়িত্বের জন্য সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের সংশ্লিষ্ট প্রস্তাব, মাদ্রিদ নীতি, আরবশান্তি উদ্যোগের ভিত্তিতে ‘দুটি-দেশ’ সমাধানের ওপর নির্ভর করেইজরায়েল-প্যালেস্টাইন সংঘর্ষের একটি দ্রুত, দীর্ঘস্থায়ী ও ব্যাপক সমাধান যাতে করাযায়, তার জন্য সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোকে গঠনমূলক সংযুক্তির আহ্বানের পুনরুল্লেখ করেছে| ২৪.নেতৃত্বরা পূর্ব ইউক্রেনের সমস্যা সমাধানে সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদেরসিদ্ধান্ত ২২০২ (২০১৫) অনুসারে সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের অংশ গ্রহণে ‘মিনস্ক চুক্তি’সম্পূর্ণ রূপায়ণের মাধ্যমে একটি কুটনৈতিক সমাধানে শক্তিশালী সমর্থনের বিষয়েওগুরুত্বারোপ করেন| ২৭.উভয় পক্ষ আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা, বৈশ্বিক আর্থিক স্থায়িত্ব ও বৃদ্ধির ক্রমবর্ধমান প্রতিকূলতামোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিকভাবে এবং জি-টুয়েন্টি, সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘ এবং অন্যান্যবহুপাক্ষিক মঞ্চের অংশীদারদের সঙ্গে কাজ করতে সম্মত হয়েছে| এবং জন আহরণের ক্ষেত্রে অভিজ্ঞতা ও সেরাঅনুশীলনের আদান প্রদান বৃদ্ধিতে সম্মত হয়েছে| কর্মসূচি ও ইউরোপের ‘এরাসমাস প্লাসে’রমধ্য দিয়ে উচ্চ-শিক্ষার ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির প্রয়োজনীয়তা রয়েছে| এরাসমাস প্লাসকর্মসূচি সম্প্রতি ভারতীয় ৫০০০তম ছাত্র হওয়ার বিষয়টি উদযাপন করেছে| তাছাড়া ভারতীয়বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়কে জয়েন্ট-মাস্টার্স, শর্ট-টার্ম মবিলিটি, ক্যাপাসিটিবিল্ডিং প্রজেক্ট ও জিন মনেট অ্যাকশন ফর ইউ.ইউ. প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বর্হিমহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের ক্ষেত্রে ভারত ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতাপত্রটি স্বাক্ষরের বিষয়টি অনুমোদন করেছে। প্রসঙ্গত, এই মউ স্বাক্ষরের ফলে যেসব বিষয়গুলি সহযোগিতামূলক কাজকর্ম বাড়বে, তারমধ্যে রয়েছে- · পৃথিবীর দূর সংবেদী বৈজ্ঞানিক গবেষনা · উপগ্রহ সংযোগ এবং উপগ্রহ ভিত্তিক দিক নির্ণয় · মহাকাশ বিজ্ঞান এবং গ্রহের অন্বেষণ · মহাকাশের বিভিন্ন বস্তুর পরীক্ষা-নিরীক্ষা · ভারতীয় উৎক্ষেপনযানের সাহায্যে ফিনল্যান্ডের মহাকাশযান উৎক্ষেপন · মহাকাশ সংক্রান্ত তথ্যের প্রক্রিয়াকরণ এবং ব্যবহার · ধাবাহারিকভাবে বর্হিমাকাশের ব্যবহার ইত্যাদি মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকীটি স্মরণীয় করে তুলতে কয়েকটি বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে দণ্ডপ্রাপ্ত জেল বন্দীদের কারামুক্তির একটি প্রস্তাবে আজ (১৮ই জুলাই, ২০১৮) সম্মতি জানাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থির হয়েছে যে তিনটি পর্যায়ে সংশ্লিষ্ট জেল বন্দীদের প্রতি এই উদারতা দেখানো হবে। যোগ্য কারাবন্দীদের মুক্তির বিষয়ে নির্দেশ পাঠানো হবে বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসনের কাছে। বন্দীমুক্তির বিষয়টি পরীক্ষা করে দেখার জন্য তাদের একটি করে কমিটি গঠন করারও পরামর্শ দেওয়া হবে। কমিটির সুপারিশগুলি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের জন্য তা রাজ্য সরকারগুলির পক্ষ থেকে পেশ করা হবে রাজ্যপালদের কাছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল (জিএসটিএটি) – এর জাতীয় বেঞ্চ গঠনে অনুমতি মিলেছে। অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের এই জাতীয় বেঞ্চটি নতুন দিল্লিতে স্থাপিত হবে। অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালের সভাপতিত্ব করবেন রাষ্ট্রপতি এবং ট্রাইব্যুনালের কেন্দ্রের একজন টেকনিক্যাল সদস্য এবং রাজ্যের পক্ষে একজন টেকনিক্যাল সদস্য থাকবেন। জিএসটি অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনাল কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে বিবাদ নিষ্পত্তির এক অভিন্ন মঞ্চ। কেন্দ্র ও রাজ্য জিএসটি আইনের আওতায় অ্যাপিলেট কর্তৃপক্ষের দেওয়া আদেশের বিরুদ্ধে অ্যাপিলেট ট্রাইব্যুনালে আবেদন করা যাবে। এছাড়া, এই চুক্তির ফলে দু-দেশের অ্যাকাউন্টিং সংস্থাগুলির মধ্যে একটি শক্তিশালী কার্যকর সম্পর্ক গড়ে উঠবে। দক্ষিণ আফ্রিকার অ্যাকাউন্টিং সংস্থার সঙ্গে আইসিএআই-এর এই সম্পর্কের ফলে একদিকে যেমন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সদস্যদের স্বার্থ সুরক্ষিত হবে, অন্যদিকে এই অঞ্চলে আইসিএআই-এর সুনাম আরও বাড়বে। বিগত কয়েক বছরে পারস্পরিক সুবিধার্থে দু-দেশের সংস্থাগুলির মধ্যে কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কুয়েতবাসীদের তাঁদের জাতীয় দিবসে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেছেন। “কুয়েতের মানুষদের তাঁদের জাতীয় দিবসে শুভেচ্ছা জানাই। আমরা কুয়েতের সঙ্গে আমাদের নিকট সম্পর্ককে মূল্যবান মনে করি এবং সেই সম্পর্ক আরও সুদৃঢ় হবার অপেক্ষায় রয়েছি” বলেন প্রধানমন্ত্রী। আইআরএনএসএস-২-এরসফল উৎক্ষেপণে ইসরোর বিজ্ঞানীদের অভিনন্দিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। “পিএসএলভি-রমাধ্যমে আইআরএনএসএস-২ উপগ্রহের সফল উৎক্ষেপণে দেশের বিজ্ঞানীদের আমি অভিনন্দনজানাই। এই সাফল্যের মধ্য দিয়ে আমাদের মহাকাশ কর্মসূচির সুফলগুলি পৌঁছে যাবে সাধারণমানুষের কাছে। নিউইয়র্ক শহরে আয়োজিত জি-৪ শীর্ষ বৈঠকে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারত ছাড়াও জি-৪ গোষ্ঠীতে রয়েছে ব্রাজিল, জার্মানি ও জাপান। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার প্রসঙ্গে এই শীর্ষ বৈঠকে নেতৃবৃন্দের মধ্যে আলাপ-আলোচনা হবে। এরপর প্রধানমন্ত্রী যাবেন ক্যালিফোর্নিয়ার স্যান জোশে। তিনি তেসলা মোটর্স পরিদর্শন করবেন এবং টিম কুক (অ্যাপেল আই.এন.সি.), সত্য নাদেলা (মাইক্রোসফ্ট), সুন্দর পিচাই (গুগল) এবং শান্তনু নারায়ণ (অ্যাডোব) সহ বিভিন্ন তথ্য প্রযুক্তি সংস্থার শীর্ষ কর্তা ব্যক্তিদের সঙ্গে দেখা করবেন। “ মাজার-ই-শরিফেকাপুরুষোচিত জঙ্গি হামলার আমি তীব্র নিন্দা করি। পবিত্র দীপাবলী উৎসব উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেছেন, সকলকে দীপাবলীর শুভেচ্ছা। এই উৎসব প্রত্যেকের জীবনে আনন্দ, সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসুক। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভারত ও মরক্কোর মধ্যে প্রস্তাবিত সংশোধিত বিমান পরিষেবা সংক্রান্ত চুক্তি অনুমোদন করেছে। ব্যবসা বাড়াতে দু’দেশের বিমান সংস্থাগুলি সমবায়ের ভিত্তিতে বিপণনের জন্য নিজেদের মধ্যে অথবা তৃতীয় পক্ষের সঙ্গে কাজ করতে পারবে। এছাড়া, দু’দেশের ছ’টি করে শহরের যাতায়াতের জন্য বিমান সংস্থাগুলি যে কোন সংখ্যায় বিমান চালাতে পারবে। ব্রিক্‌স-এর প্রতিনিধি হিসেবে জি-২০-র কর্মসূচি ও কর্মপ্রচেষ্টায় অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্রগুলিকে আমাদের অবশ্যই চিহ্নিত করতে হবে। প্রথমত – উন্নয়নের প্রশ্নে জি-২০’তে অবশ্যই অগ্রাধিকার দিতে হবে কয়েকটি বিষয়কে, সেগুলি হল :-  ২০৩০ সাল পর্যন্ত নিরন্তর উন্নয়ন কর্মসূচির সফল রূপায়ণ এবং সেজন্য পর্যাপ্ত তহবিল গঠন। দ্বিতীয়ত –বিশ্বে আর্থিক সহায়তার যোগানের প্রশ্নে জি-২০-র উচিৎ এই ব্যবস্থাগুলির দিকে নজর রাখা :  বিশ্বের অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলির পুনর্গঠনের লক্ষ্যে গৃহীত সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন।  বহুমুখী তথা আঞ্চলিক অর্থ প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে বৃহত্তর সহযোগিতা।  উন্নয়নশীল দেশগুলিতে পরিকাঠামো গড়ে তুলতে দীর্ঘমেয়াদে আর্থিক যোগান।  দুর্নীতি দমনে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়সাধন এবং বিদেশে মজুত হিসাব বহির্ভূত অর্থের লেনদেন ও পাচার বন্ধ করা। তৃতীয়ত –বাণিজ্যিক কাজকর্মের ক্ষেত্রে আমাদের অবশ্যই লক্ষ্য রাখতে হবে এই বিষয়গুলির ওপর :-  নিয়মনীতি ভিত্তিক বিশ্ব বাণিজ্য ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে তোলা এবং নতুন নতুন বাণিজ্যিক উদ্যোগগুলি যাতে বিশ্ব বাণিজ্যে কোনও রকম বিচ্ছিন্নতার প্রশ্রয় না দেয়, তা নিশ্চিত করা।  দোহা উন্নয়ন কর্মসূচির দ্রুত রূপায়ণ।  দক্ষ পেশাদার কর্মীদের আরও বেশি করে কাজে লাগানো এবং বিশ্বে দক্ষ কর্মীদের চাহিদা ও নিয়োগের জন্য এক বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলা। চতুর্থত –জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় জি-২০ ভুক্ত দেশগুলির উচিৎ এই বিষয়গুলিতে অগ্রাধিকার দেওয়া :  রাষ্ট্রসঙ্ঘের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় সি ও পি-২১-এর আলাপ-আলোচনাকে ফলপ্রসূ করে তোলা।  জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় এবং প্রযুক্তি হস্তান্তরের কাজে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে সহায়তাদান।  বিশুদ্ধ এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি সম্পর্কে গবেষণা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজকর্মের প্রসার ঘটানো, যাতে বিশুদ্ধ জ্বালানি শক্তির সুলভ ব্যবহার সম্ভব করে তোলা যায়।  পরবর্তী প্রজন্মের উপযোগী জলবায়ু প্রতিরোধী পরিকাঠামো গঠন এবং উন্নয়নে সহায়তাদান।  ভারতের প্রস্তাবিত আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার বিষয়টিকে সহায়তাদান। পঞ্চমত –জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির উচিৎ, নিরাপত্তা সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় বিশ্বে এক শক্তিশালী কর্মপদ্ধতি উদ্ভাবন করা, যাতে নজর দিতে হবে, এই বিষয়গুলির ওপর : –  সন্ত্রাসবাদীদের কাছে কোনও রকম অর্থ সহায়তা ও অস্ত্রশস্ত্রের যোগান বন্ধ করতে এক বিশ্ব প্রকৌশল স্থির করা, যাতে সন্ত্রাসবাদীদের সমস্ত রকম যোগাযোগের রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া যায়।  সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির কাছে অস্ত্রশস্ত্র ও বিস্ফোরক সামগ্রীর যোগান পুরোপুরি বন্ধ করতে হবে।  সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মকে ধ্বংস করতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গড়ে তুলতে হবে এক বিশেষ আইনি ব্যবস্থা।  সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলি যাতে অপরাধমূলক কাজকর্মের জন্য সাইবার নেটওয়ার্ক ব্যবহার করতে না পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখা।  আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে সুসংহত আলোচনা বৈঠক আহ্বান করা। ব্রিক্‌স অর্থনীতি যে উত্তরোত্তর স্থায়ী ও শক্তিশালী হয়ে উঠবে সে ব্যাপারে আমি দৃঢ় আত্মপ্রত্যয়ী।বিশ্ব অর্থনীতিতে শক্তির যোগান দেবে ব্রিক্‌স অর্থনীতি। ব্রিক্‌স অর্থনৈতিক সহযোগিতা কৌশল এক মূল্যবান কাঠামোগত দলিল – একথা আমাদের মনে রাখতে হবে। বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক বিষয়সমূহের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যোগাযোগ রক্ষাকারী গোষ্ঠীর উচিৎ প্রকৌশল সূত্রের সময়-ভিত্তিক বাস্তবায়নে এক কার্যসূচি ছকে ফেলা। প্রকৌশলের অন্তর্ভুক্ত অন্তত দুটি করে অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্রে প্রত্যেক ব্রিক্‌স সদস্য রাষ্ট্রকে নেতৃত্ব দিতে হবে। রাশিয়ান চেয়ারম্যানশিপের সময়কাল হল প্রথম যৌথ বৈঠক আহ্ববানের উপযুক্ত সময়। যৌথ বৈঠকে ২০২০ সাল পর্যন্ত বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক তথা বিনিয়োগ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধার প্রসারে একটি খসড়া প্রস্তুত করা যেতে পারে। আমরা এই বিষয়গুলির ওপর অবশ্যই কাজ করবো এবং ব্রিক্‌স-এর কার্যসূচিতে আরও নতুন নতুন চিন্তাভাবনা সংযোজন করবো। ব্রিক্‌স’কে আরও শক্তিশালী করে তুলতে এবং তার ব্যবস্থাকে আরও মজবুত করে তুলতে আমরা আপনাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যাব। এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে দুই দেশের মধ্যে খনন ও ভূ-বিদ্যা ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তুলতে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হবে। এছাড়া আর্থিক, সামাজিক ও পরিবেশগত দিক থেকেও দু-দেশ উপকৃত হবে। “ডঃ জাকির হোসেনের জন্মবার্ষিকীতে ভারত তাঁকে স্মরণ করছে। ভারতের স্বাধীনতাআন্দোলনে তাঁর প্রভূত অবদান ছিল। মহিলা ব্যাঙ্ক প্রতিনিধিদের মধ্যে তিনি বন্টন করেন নিয়োগপত্র ও মিনি-এটিএম। অ্যাস্টোল জল সরবরাহ প্রকল্পেরও এদিন শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ‘সকলের জন্য বাসস্থান’ নিশ্চিত করে তোলার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের চিন্তাভাবনার কথাও এদিন পুনরুচ্চারিত হয় প্রধানমন্ত্রীর কন্ঠে। শ্রী মোদী বলেন, রাজনৈতিক ক্ষেত্রের ব্যক্তিদের মধ্যে সৌখিন বাড়ি তৈরি করার একটি প্রবণতা দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার আসামে বগিবিল সেতু জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। রাজ্যের ডিব্রুগড় ও ধেমাজি জেলার মধ্যে ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর নির্মিত এই সেতুটির দেশের স্বার্থে বিশেষ অর্থনৈতিক ও কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। ব্রহ্মপুত্রের উত্তর তীরে অবস্থিত কারেঙ্গ চাপোরি’তে এক বিশাল জনসভায় প্রধানমন্ত্রী ঐ সেতু দিয়ে প্রথম যাত্রীবাহী ট্রেনটির যাত্রা সূচনাও করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী সদ্য প্রয়াত জনপ্রিয় অসমীয় কন্ঠশিল্পী দীপালি বড়ঠাকুরের স্মরণে তাঁকে শ্রদ্ধা জানান। এই রাজ্য এবং দেশের জন্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে গৌরব ও সাফল্যের অধিকারী অন্যান্য বহু বিশিষ্ট ও ঐতিহাসিক ব্যক্তিত্বদেরকেও তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। বড়দিন উপলক্ষে তিনি জনগণকে শুভেচ্ছা জানান। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীকে তাঁর জন্মবার্ষিকীতে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের দিনটি ‘সুশাসন’ দিবস হিসাবেও উদযাপিত হয়ে থাকে। প্রধানমন্ত্রী বিগত সাড়ে চার বছরে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সুশাসন’ নীতি অনুসরণের কথাও উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঐতিহাসিক বগিবিল রেল তথা সড়ক সেতুটি ‘সুশাসন’ নীতি অনুসরণেরই ইঙ্গিত বহন করে। কারিগরি ও প্রযুক্তিগত দিক থেকে বিস্ময়কর এই সেতুটির ব্যাপক কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। এই সেতুটি নির্মিত হওয়ার ফলে আসাম ও অরুণাচল প্রদেশের মধ্যে দূরত্ব বহুলাংশে হ্রাস পেয়েছে। শুধু তাই নয়, এই সেতুটি সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রাকে অনেক সহজ করে তুলেছে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। শ্রী মোদী বলেন, এই অঞ্চলের কয়েক প্রজন্মের মানুষের কাছে এই সেতুটি স্বপ্নের মতো ছিল, যা আজ বাস্তবায়িত হ’ল। সেতু নির্মাণে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলের ভূমিকারও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০১৭-র মে মাসে এই রাজ্যের সাদিয়া-তে ভূপেন হাজারিকা নামাঙ্কিত দেশের দীর্ঘতম সড়ক সেতুটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গের কথাও প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন। বিগত ছয় – সাত দশকে আসামে কেবলমাত্র তিনটি সেতু নির্মাণের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিগত সাড়ে চার বছরেই রাজ্যে আরও তিনটি সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে। অন্য ৫টি সেতু নির্মাণের কাজ চলছে। তিনি বলেন, ব্রহ্মপুত্র নদের উত্তর ও দক্ষিণ পাড়ের মধ্যে যোগাযোগ বৃদ্ধি ‘সুশাসন’ – এরই ইঙ্গিত বহন করে। উন্নয়নের এই গতি উত্তর – পূর্বাঞ্চলকে বদলে দেবে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের ‘পরিবহণের মাধ্যমে পরিবর্তনের’ পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, দেশে আজ দ্রুতগতিতে পরিকাঠামোর বিকাশ হচ্ছে। উত্তর – পূর্বাঞ্চলে যোগাযোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত একাধিক কর্মসূচির কথাও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, শক্তিশালী এবং প্রগতিশীল পূর্ব ভারত প্রগতিশীল ও উদীয়মান ভারতের জন্য এক গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। একাধিক পরিকাঠামোগত প্রকল্পের পাশাপাশি, প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা, স্বচ্ছ ভারত অভিযান প্রভৃতি উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করে জানান, আসামে এই উদ্যোগগুলিতে দ্রুত অগ্রগতি ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের দূরদূরান্তে বসবাসকারী যুবকরাও আন্তর্জাতিক মঞ্চে ভারতের নাম উজ্জ্বল করছে এবং সকলকে গর্বিত করছে। আসামের প্রতিভাবান অ্যাথলিট হিমা দাসের কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, যুব সম্প্রদায় এখন নতুন ভারতের আত্মপ্রত্যয়ের প্রতীক হয়ে উঠছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভারবৈঠকে আজ ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র সহযোগিতার জন্য সমঝাতাপত্রস্বাক্ষরের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। শক্তিক্ষেত্রে ভারত ও ইজরায়েল মৈত্রীবন্ধন এই সমঝোতার ফলে আরওজোরদার হবে মনে করা হচ্ছে। ভারতীয় বিদেশ সেবা, অর্থাৎ, ইন্ডিয়ান ফরেন সার্ভিসের ২০১৪ এবং ২০১৫ ব্যাচের ৬৪ জন প্রশিক্ষণার্থী আধিকারিক মঙ্গলবার সাক্ষাৎ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (২১শে অক্টোবর, ২০১৮) পুলিশ স্মৃতিরক্ষা দিবসে জাতীয় পুলিশ স্মারক জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন। বিপর্যয়ের হাত থেকে মানুষের জীবন রক্ষা করতে গিয়ে যাঁরা সাহসিকতার পরিচয় দেন, এখন থেকে প্রতি বছর তাঁদের সম্মানে এই পুরস্কার দেওয়া হবে। শ্রী নরেন্দ্র মোদী জাতীয় পুলিশ স্মারকে পুষ্পস্তবক প্রদান করেন এবং শহীদদের শ্রদ্ধা জানান। হট স্প্রিংস দুর্ঘটনায় প্রাণে রক্ষা পাওয়া তিনজনকে প্রধানমন্ত্রী সম্মানিত করেন। জাতীয় পুলিশ স্মারক সংগ্রহালয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে ভিজিটর্স বুকে প্রধানমন্ত্রী স্বাক্ষর করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দেশের সেবায় জীবন উৎসর্গ করেছেন এমন বীর ও সাহসী পুলিশকর্মীদের কুর্ণিশ জানান। লাদাখের হট স্প্রিংস-এ যে বীর পুলিশকর্মীরা সাহসের সঙ্গে লড়াই করেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের স্মরণ করেন এবং তাঁদের পরিবারবর্গ এবং প্রিয়জনদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করেন। জাতীয় পুলিশ স্মারক উৎসর্গ করতে পেরে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, স্মারকের মূল স্থাপত্যটি পুলিশবাহিনীর ক্ষমতা, সাহস ও সেবার প্রতি নিয়োজিত থাকার প্রতীক। তিনি আরও জানান যে জাতীয় পুলিশ স্মারকের সঙ্গে যুক্ত প্রতিটি বস্তু নাগরিকদের পুলিশ ও আধা-সামরিক বাহিনীর সাহসিকতা সম্বন্ধে শিক্ষা দেবে ও অনুপ্রেরণা যোগাবে। তিনি বলেন, দেশ গঠনের কাজে যাঁরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, তাঁদের যথোপযুক্ত সম্মান প্রদান সংক্রান্ত সরকারের চিন্তাধারার প্রতিফলন এই স্মারক। প্রযুক্তির গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী পুলিশবাহিনীকে সেবা নিবৃত্তিতে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের প্রয়োগের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ ও সমাজের মধ্যে যোগাযোগ আরও জোরদার করে তুলতে পুলিশবাহিনীকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হবে। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেকটি পুলিশ স্টেশনকে আরও নাগরিক-বান্ধব করে তোলার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভারত ও কেনিয়ার মধ্যে জাতীয় আবাসন নীতিমালাউন্নয়ন ও পরিচালনা (এন.এইচ.পি.ডি.এম.) ক্ষেত্রে সহযোগিতায় সমঝোতা স্মারকের (মউ)জন্য এক্সপোস্ট-ফ্যাক্টো অনুমোদন দিয়েছে| ভারতের প্রধানমন্ত্রী নাইরোবি সফরে গেলে ২০১৬-এর১১ জুলাই এই মউ স্বাক্ষরিত হয়| এই মউ অনুসারে কর্মীদেরপ্রশিক্ষণ, দু’পক্ষের পরিদর্শন, প্রদর্শনী/মেলা, সম্মেলন, কর্মশালা ইত্যাদি সহবিভিন্ন কৌশলের মাধ্যমে আবাসন ও জনবসতি ক্ষেত্রের সমস্ত বিষয়ে দু’পক্ষ সহযোগিতাকরবে| দু’দিনের সফরে অ্যাকাডেমিতে গিয়ে তিনি আধিকারিক প্রশিক্ষার্থীদের চারটিগ্রুপের সঙ্গে বৈঠক করেন। বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয় তাঁদের মধ্যে। আধিকারিক প্রশিক্ষার্থীদের এক নাতিদীর্ঘ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানেওউপস্থিত ছিলেন তিনি। এর আগে অ্যাকাডেমিতে পৌঁছে সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেল এবং ভূতপূর্বপ্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর মূর্তিতে মাল্যর্পণ করেন শ্রী মোদী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বস্টনের খ্যাতনামা শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ম্যাসাচুসেট্‌স ইনস্টিটিউট অফ টেকনোলজি (এম আই টি)-র প্রসিডেন্ট ডঃ রাফায়েল রিফ আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, জল ও উদ্ভাবন সংক্রান্ত ক্ষেত্রে এম আই টি যেসব কাজ করে চলেছে সে সম্পর্কে তিনি প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। ডঃ রিফ প্রধানমন্ত্রীকে এম আই টি সফরে এসে শিক্ষক ও ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতার আমন্ত্রণ জানান। প্রধানমন্ত্রী ডঃ রিফ-কে ‘স্কিল ইন্ডিয়া’, ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ এবং ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’র মতো ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচিতে এম আই টি-র দক্ষতাকে কাজে লাগানোর সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে অনুরোধ করেন। শ্রী মোদী বলেন, এম আই টি-র প্রবীণ বা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষকরা কয়েক মাসের ভারতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াতে ভারতে আসতে পারেন। ডঃ রিফ শ্রী মোদীর এই প্রস্তাবের প্রশংসা করে বলেন, এ ব্যাপারে তিনি সহায়তা করতে চান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, রুশ রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন এবং চিনা রাষ্ট্রপতি শি জিংপিং – এর মধ্যে বুয়েনস এয়ার্সে আজ ত্রিপাক্ষিক বৈঠক হয়। তিন নেতাই আন্তর্জাতিক মঞ্চে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর এবং তিন দেশের মধ্যে মতামত বিনিময়ের বিষয়ে গুরুত্ব দেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং ডব্লিউটিও-র মতো বিশ্ব প্রতিষ্ঠানের উপকার হয় এমন বহুপাক্ষিক প্রতিষ্ঠানের পুনর্গঠনে জোর দেন তাঁরা। বহুপাক্ষিক বাণিজ্য ব্যবস্থা এবং মুক্ত বিশ্ব অর্থনীতি আন্তর্জাতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে বলে তিন নেতাই মত পোষণ করেন। প্রয়াতকেদারনাথ সাহনির জীবনকাহিনী অবলম্বনে রচিত একটি গ্রন্থ মঙ্গলবার প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। এইউপলক্ষে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত সাহনির জীবনের কিছু কিছু বিশেষ মুহূর্তেরস্মৃতিচারণ করেন। সমাজ তথা জনজীবনে মূল্যবোধের অবক্ষয়ে বিশেষ উদ্বেগ প্রকাশ করেপ্রধানমন্ত্রী বলেন, দৈনন্দিন জীবনযাত্রায় দুর্নীতি ও কালো টাকার দৌরাত্ম্যকে কখনইমেনে নেওয়া যায় না। প্রধানমন্ত্রীতাঁর বক্তব্যে উল্লেখ করেন যে প্রশাসন ও পরিচালনের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার ওদৃষ্টিভঙ্গি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ দুটি বিষয়। তিনি বলেন, রাজ্যগুলির অভিজ্ঞতা থেকেআমাদের অনেক কিছুই শিক্ষণীয় রয়েছে যা বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায়শ্রেষ্ঠ সমাধানের পথ দেখাতে পারে। তিনি আরও বলেন যে শীর্ষ স্থানীয় সরকারি কর্মীদেরচ্যালেঞ্জ জয় করার এক মিলিত চিন্তাভাবনা ও ক্ষমতা রয়েছে। এই বিষয়টিতে অভিজ্ঞতাবিনিময় যে বিশেষভাবে জরুরি সেকথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদীবলেন, বিভিন্ন রাজ্যের তরুণ আধিকারিকদের একটি দলের উচিৎ প্রতিটি রাজ্য সফর করে এবংসেখানকার কাজকর্মের সেরা পদ্ধতিগুলি সম্পর্কে অবহিত হয়ে তা অনুসরণ করা। এইব্যবস্থায় সবক’টি রাজ্যেই সেরা কাজের পদ্ধতি অনুসৃত হতে পারে বলে মনে করেন তিনি। মুখ্যসচিবদের ‘প্রতিযোগিতামুখী সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়তা’ নীতির প্রতি সর্বদা সজাগথাকার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। উন্নয়ন ও সুপ্রশাসনের কাজে এক প্রতিযোগিতামুখীপরিবেশ গড়ে তুলতে বিভিন্ন জেলা ও শহরগুলিকেও অন্তর্ভুক্ত করার প্রয়োজনীয়তা রয়েছেবলে মনে করেন তিনি। এটি নিঃসন্দেহে আমাদের কাছে এক সুবর্ণ সুযোগ এনে দিয়েছে। বাণিজ্যিককাজকর্মকে সহজতর করে তোলার বিষয়টিকে যে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া প্রয়োজন, সে কথাস্মরণ করিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তার মধ্য দিয়ে রাজ্যগুলি আরও বেশি করেবিনিয়োগ আকর্ষণ করতে পারবে। তিনি বলেন, বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলার বিষয়টিকেআরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারলে রাজ্যগুলিতেও আরও বেশি করে বিনিয়োগ সম্ভব হয়ে উঠবে।রাজ্যগুলির পর্যাপ্ত উন্নয়ন সম্ভাবনা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তুএই সম্ভাবনাকে এখনও পুরোপুরি এবং সঠিকভাবে কাজে লাগানো হয়নি বলে মনে করেন তিনি। গুজরাটেরমুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তাঁর সূচনার সেই দিনগুলির কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী।কচ্ছ-এর ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্নিমাণ প্রচেষ্টারও উল্লেখ করেন তিনি। ঐ দিনগুলিতেযে সমস্ত কর্মী ও আধিকারিক দলবদ্ধভাবে নিবেদিত প্রাণ হয়ে কাজে ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রীতাঁদের ভূয়সী প্রশংসাও করেন। অপ্রচলিত বিধি ও আইনগুলি বাতিল করার প্রয়োজনীয়তারকথাও তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। কৃষিপ্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে শ্রী মোদী বলেন যে এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে প্রযুক্তিরপ্রয়োগ ও ব্যবহার খুবই গুরুত্বপূর্ণ। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ওপর বিশেষ জোর দিয়েপ্রধানমন্ত্রী বলেন যে কৃষি উৎপাদনের বিষয়টি বর্জ্য মুক্ত করে তুলতে হবে। কৃষিসংস্কার কর্মসূচি বিশেষত, বৈদ্যুতিন বিপণন ব্যবস্থাকে বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়ারজন্য রাজ্যগুলির কাছে আর্জি জানান তিনি। নতুন নতুনউদ্যোগ ও কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণের জন্য আধিকারিকদেরউদ্বুদ্ধ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, নির্বাচিত রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ মতাদর্শনির্বিশেষে সর্বদাই নতুন ও ইতিবাচক চিন্তাভাবনাকে স্বাগত জানিয়ে থাকেন। স্মরণীয় ঘটনাবলীর প্রাতিষ্ঠানিক সংরক্ষণের ওপরও বিশেষ জোরদেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সরকারি আধিকারিকদের দিয়ে গেজেট রচনা করা জেলাগুলিরমধ্যে বাধ্যতামূলক করে তোলা উচিৎ। আগামী ২০২২সালে দেশের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পূর্তি হতে চলেছে। একথা স্মরণ করিয়ে দিয়েপ্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের সার্বিক বিকাশ ও অগ্রগতির লক্ষ্যে মিলিতভাবে উৎসাহ ওঅনুপ্রেরণা লাভের এ হল এক বিশেষ সুযোগ ও মুহূর্ত। মণিপুরের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে পরিপূর্ণ, কঠোর পরিশ্রমী মানুষকে নিয়ে মণিপুর আশীর্বাদধন্য। মণিপুরে আমি যে আন্তরিকতা পেয়েছি, তা আমি কোনও দিন ভুলব না। প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই দিনে মণিপুরের ভাই-বোনেদের আমি অভিনন্দন জানাই। ভারতীয় রেলের চিকিৎসা সেবার আওতায় যে সমস্ত চিকিৎসক বর্তমানে কর্মরতরয়েছেন, তাঁদের অবসর গ্রহণের বয়ঃসীমা ৬৫ বছর করার এক প্রস্তাবে আজ কর্মপরবর্তীঅনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেঅনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে একই সঙ্গে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় এবংস্বশাসিত আইআইটি’গুলিতে কর্মরত চিকিৎসকদের অবসর গ্রহণের বয়ঃসীমা ৬৫ বছর করারপ্রস্তাবে কর্মপরবর্তী অনুমোদন দেওয়া হয়। বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক ও দপ্তরের১,৪৪৫ জন কর্মরত চিকিৎসক এর ফলে উপকৃত হবেন। মাননীয়প্রেসিডেন্ট মহোদয়া এবং বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ, প্রেসিডেন্টমহোদয়া এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে ভারতে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। ভারত ও স্যুইজারল্যান্ডের মধ্যেমৈত্রী সম্পর্কের সাত-সাতটি দশকও পূর্ণ হতে চলেছেএই বছরটিতে। ২০১৬-তেস্যুইজারল্যান্ড সফরের সময় যে আপ্যায়ন ও আন্তরিকতাআমরা লাভ করেছিলাম, সেই একইধরনের অভিজ্ঞতা যে আপনিও সঞ্চয় করে নিয়ে যাবেন, এ বিষয়ে আমরা নিঃসংশয়। দুটি দেশইযে সকল পর্যায়ে এই গভীর সম্পর্ককে অটুট ও অক্ষুণ্ণ রাখতে আগ্রহী তাতে আমিবিশেষভাবে আনন্দিত। আজ আমরাবিস্তারিতভাবে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক বিষয়গুলি নিয়ে এক সফলআলোচনা-বৈঠকে মিলিত হয়েছিলাম। এই সফরের মধ্য দিয়ে আমাদের বলিষ্ঠ দ্বিপাক্ষিকসম্পর্ক সুদূরপ্রসারী হয়ে উঠবে বলেও আমরা মনে করি। ভারত এবংইউরোপের মুক্ত বাণিজ্য প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বচুক্তির বিষয়টি নিয়েও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। কালো টাকা কিংবা অসৎ পথে অর্জিত অর্থ, অর্থের বেআইনি লেনদেন কিংবাঅস্ত্র ও মাদক চালানের কাজে অর্থের ব্যবহার – যাই হোক না কেন, বিষয়টি নিঃসন্দেহেগুরুত্বপূর্ণ। বর্তমান বিশ্বের এই অভিশপ্ত দিকটির মোকাবিলায় স্যুইজারল্যান্ডেরসঙ্গে আমাদের সহযোগিতা অটুট ও অক্ষুণ্ণ থাকবে। করসংক্রান্ত বিষয়গুলিতে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় তথ্যের লেনদেনের জন্য গত বছর এক যৌথবিবৃতিতে আমরা স্বাক্ষর করেছিলাম। এই চুক্তির আওতায় স্যুইজারল্যান্ডে অভ্যন্তরীণপ্রক্রিয়াকরণের কাজ সম্পূর্ণ হলে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় তথ্যের আদান-প্রদান ঘটবেআমাদের মধ্যে। অর্থনৈতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ হল একটিগুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং স্যুইস বিনিয়োগকারীদের আমরা বিশেষভাবে স্বাগত জানাতেআগ্রহী। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে এক নতুন দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির প্রয়োজনীয়তারবিষয়টি সম্পর্কে আলোচনা চালিয়ে যেতে আমরা সম্মতি প্রকাশ করেছি। স্যুইস সংস্থাগুলিরজন্য বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধার প্রস্তাব রয়েছে যাতে তারা ভারতের বিকাশ ও সমৃদ্ধিপ্রচেষ্টায় অংশীদার হয়ে উঠতে পারে। আজ দু’দেশেরবাণিজ্য প্রতিনিধিদলের মধ্যে আলোচনাকালে আমরা অনুভব করেছি যে পারস্পরিক কল্যাণেউভয় পক্ষই বাণিজ্যিক প্রচেষ্টাকে নিরন্তরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেখুবইআগ্রহী ও আশাবাদী। ভারতেরচিরাচরিত চিকিৎসা পদ্ধতি, বিশেষত আয়ুর্বেদ চিকিৎসা মানুষের সুস্বাস্থ্যও ভালোথাকার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। আমি বিশেষভাবে খুশি যেস্যুইজারল্যান্ড ইতিমধ্যেই আয়ুর্বেদ চিকিৎসা পদ্ধতিকে স্বীকৃতি জানিয়েছে এবং এইবিশেষ ক্ষেত্রটিতে আরও বেশি করে সহযোগিতা লাভের তারা প্রত্যাশী। জলবায়ুপরিবর্তন আজ প্রত্যেকটি দেশের কাছেই এক বিশেষ চ্যালেঞ্জ এনে দিয়েছে। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর সদস্য পদেভারতের অন্তর্ভুক্তির মাধ্যমে আমাদের বিশুদ্ধ জ্বালানি সংক্রান্ত চাহিদার একটিসুরাহা হতে পারে। এই পরিপ্রেক্ষিতে এনএসজি-র সদস্যপদে আন্তর্ভুক্তির জন্য ভারতেরআগ্রহকে নিরন্তরভাবে সমর্থন জানিয়ে যাওয়ায় স্যুইজারল্যান্ডের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ। আন্তর্জাতিকসৌর সমঝোতা এবং আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ১৭৫ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিউৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে যে পদক্ষেপ ভারত গ্রহণ করেছে, তার মাধ্যমে বিশুদ্ধ জ্বালানি এবং দূষণমুক্ত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে ভারতেরঅঙ্গীকারেরই প্রতিফলন ঘটেছে। আপনাদের এইসফর যে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করার কাজে যথেষ্টসাহায্য করবে এ বিষয়ে আমি দৃঢ় বিশ্বাসী। আপনাদেরঅসংখ্য ধন্যবাদ। উৎকল দিবস উপলক্ষে ওড়িশাবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর একটি স্বপ্নের প্রকল্প ‘আম্মা টু হুইলার’ কর্মসূচির আজ সূচনা করতেপেরে আমি আনন্দিত। ঠিক এই লক্ষ্যেই আমরা কাজকরে চলেছি। প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার আওতায় ১১ কোটিরও বেশি ঋণ সহায়তা মঞ্জুর করাহয়েছে। সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয়বাজেটে আমরা ঘোষণা করেছি যে নতুন মহিলা কর্মীদের ক্ষেত্রে ইপিএফ বাবদ প্রদেয় অর্থতিন বছরের জন্য ১২ শতাংশের পরিবর্তে ৮ শতাংশ ধার্য করা হবে। কিন্তু নিয়োগকর্তারপ্রদেয় অর্থ ১২ শতাংশ হারেই অপরিবর্তিত থাকবে। মাতৃত্বকালীন ছুটিও ১২সপ্তাহ থেকে আমরা বাড়িয়ে দিয়েছি ২৬ সপ্তাহ পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় সুফল গ্রহীতাদের জন্য বাসস্থান নির্দিষ্টমহিলাদের নামেই নথিভুক্তির ব্যবস্থা রয়েছে। কার্বনডাই অক্সাইড নির্গমনের মাত্রাও তাৎপর্যপূর্ণভাবেই হ্রাস পেয়েছে। দেশের পল্লী অঞ্চলে গ্যাসের যোগান বৃদ্ধি এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রসারেরকথা মনে রেখে কেন্দ্রীয় সরকার গোবর-ধন প্রকল্পের কাজ হাতে নিয়েছে। কংগ্রেস সরকার কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকাকালীন ত্রয়োদশ অর্থ কমিশনের আওতায়তামিলানাডুকে দেওয়া হয়েছিল ৮১ হাজার কোটি টাকা। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি দরিদ্র মানুষের যাতে একটি করে নিজস্ববাসস্থান থাকে, সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত তিন বছরে নির্মিতহয়েছে প্রায় ১ কোটির মতো বাসস্থান। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা রূপায়ণের ফলেও উপকৃত হয়েছেন তামিলনাডুর কৃষকসাধারণ। এই কর্মসূচির আওতায় এই রাজ্যের কৃষকদের ২,৬০০ কোটি টাকারও বেশি দাবিদাওয়ামিটিয়ে দেওয়া হয়েছে। ‘প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা’ এবং ‘জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা’র আওতায়বিমার সুযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে ১৮ কোটিরও বেশি জনসাধারণের কাছে। ৮০০টিরও বেশিজনওষধি কেন্দ্রের মাধ্যমে অনেক স্বল্প খরচে ওষুধের যোগান দেওয়ার ব্যবস্থা করেছিআমরা। জনসাধারণের জীবনযাত্রায় এক ইতিবাচক পরিবর্তন সুনিশ্চিত করে তুলতে আমরাঅঙ্গীকারবদ্ধ। “হিমাচলবাসীকে রাজ্যের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যে পরিপূর্ণ ও সাহসিকতার নিদর্শন রাখা এই রাজ্যটি আগামী বছরগুলিতে আরও সমৃদ্ধি লাভ করুক। কালো টাকা ওদুর্নীতির বিরুদ্ধে অভিযান কোন রাজনৈতিক লড়াই নয়। শ্রী মোদী বলেন, বর্তমানেস্পষ্টতঃই দুটি পক্ষ তৈরি হয়েছে যার একদিকে রয়েছে দেশের জনসাধারণ ও সরকার এবংঅন্যদিকে অবস্থান করছে রাজনৈতিক নেতাদের একটি গোষ্ঠী। কিন্তু আমাদের সমাজে যাইতিমধ্যেই ঘুণ ধরিয়েছে তার মেরামত ও প্রতিকারে ভারত এখন সঙ্কল্পবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রীবলেন, প্রাতিষ্ঠানিকতাকে সবসময়ই রাজনীতির ঊর্ধ্বে রাখা উচিৎ এবং এই কারণে ভারতীয়শীর্ষ ব্যাঙ্ককে বিতর্কের মধ্যে টেনে আনা ঠিক নয়। দেশের প্রশাসন ওপরিচালন ব্যবস্থা সম্পর্কে মন্তব্য করতে গিয়ে শ্রী মোদী বলেন, এক্ষেত্রে কাজ হয়েছেপ্রচুর যা সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন নিশ্চিত করেছে। ই-বিপণন ব্যবস্থায় সরকারি শস্যসংগ্রহ প্রক্রিয়াকে যথেষ্ট মাত্রায় স্বচ্ছ করে তোলা হয়েছে। ‘স্বচ্ছ ভারতঅভিযান’-এর বার্তাকে বিভিন্ন দিকে ছড়িয়ে দেওয়া এবং এ সম্পর্কে জনসচেতনতা প্রসারের জন্যসংবাদমাধ্যমগুলিকে অভিনন্দিত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের পল্লী অঞ্চলেপরিচ্ছন্ন স্বাস্থ্য ব্যবস্থার এখন ভালোরকম প্রসার ঘটেছে। পরিচ্ছন্নতাকে একটিজন-আন্দোলন রূপে গড়ে তোলা উচিৎ এবং এই লক্ষ্যে কাজ করে যেতে হবে আমাদের সকলকেই। জৈন আচার্য রত্নসুন্দরসুরিশ্বরজি মহারাজের “মারু ভারত সারু ভারত”, অর্থাৎ, “আমার ভারত মহান ভারত” গ্রন্থটি ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মুম্বাইয়ে রত্নত্রয়ী ট্রাস্টের সাহিত্য সৎকার সমিতি আয়োজিত এই গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানে ভাষণদানকালে আচার্য রত্নসুন্দরসুরিশ্বরজি মহারাজের গ্রন্থাবলীর ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩০০ গ্রন্থ রচনা করা কম কৃতিত্বের নয়। মহারাজ সাহেবের বিভিন্ন লেখায় জীবনের অনেকগুলি দিকই প্রতিফলিত হয়েছে। গ্রন্থগুলির মধ্য দিয়ে ধ্বনিত হয়েছে তাঁর ‘দিব্য বাণী’ যার মধ্য দিয়ে সমাজকে কিছু ফিরিয়ে দেওয়ার আকুতি জানানো হয়েছে মানুষের কাছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্র ধর্ম সর্বদাই সকল ধর্মের ওপরে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত কখনোই সাম্প্রদায়িকতাকে প্রশ্রয় দেয়নি বরং, মানবকল্যাণে আধ্যাত্মিকতার বাণীই প্রচার করে এসেছে। “আধ্যাত্মিকতার মাধ্যমেই প্রতিটি সমস্যার সমাধান সম্ভব বলে আমরা বিশ্বাস করি।” রাশিয়ার উপ-প্রধানমন্ত্রী মিঃ দিমিত্রি রোগোজিন শনিবার বিকেলে এখানে একসাক্ষাৎকারে মিলিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। এ বছর মিঃ রোগোজিন-এর তৃতীয় ভারত সফর উপলক্ষে তাঁকে আন্তরিকভাবে স্বাগতজানান প্রধানমন্ত্রী। ১২৫ কোটি মানুষের দেশের একজন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে যখন কেউ সাক্ষাৎ করতে যান, তখন কিন্তু তাঁর মনে হয় না যে দেশে বা বিদেশে তিনি এক মহানায়কের সম্মান অর্জন করেছেন। হয়তো এই কারণেই ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎকারকে এক বিশেষ ঘটনা বলে মনে করা হয়। নরেন্দ্র মোদী হলেন এক ভিন্ন প্রকৃতির নেতা। ইজরায়েলবাসীদের পক্ষে এ এক অনন্য সম্মান। সত্যি কথা বলতে কি, এ হ’ল তাঁর এক বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। এক দরিদ্র পরিবারে জন্মগ্রহণ করেও অভাব-অনটনের সংসারে কিভাবে একটু একটু করে নিজেকে প্রস্তুত করে জীবনে সাফল্য অর্জন করেছেন, একথা চিন্তা করে তিনি যথেষ্ট গর্ববোধ করেন। তাঁর এই মন্ত্রের তর্জমা করলে দাঁড়ায় ‘সকলের স্বার্থে, সকলের কল্যাণে, সকলকে সঙ্গে নিয়ে সকলের জন্য উন্নয়ন’ নিশ্চিত করা। ভারত ও ইজরায়েলের জনসাধারণের মধ্যে যে গভীর সম্পর্কের এক বাতাবরণ গড়ে উঠেছে এ কথাই আমাদের সাক্ষাৎকারে বারবার বোঝাতে চেয়েছেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি মনে-প্রাণে বিশ্বাস করেন যে, দুটি জাতিই পরস্পরের সঙ্গে খুবই একাত্মবোধ করে। প্রশ্ন : ইজরায়েল’কে আপনি কতটা চেনেন বা জানেন? আপনি কি কখনও ইজরায়েল সফর করেছেন? “২০০৬ সালে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে কৃষি প্রযুক্তি প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণের জন্য যখন ইজরায়েল সফর করেছিলাম, তখনই ইজরায়েল সম্পর্কে আমার প্রথম ও প্রাথমিক এক ধারণা ও অভিজ্ঞতা গড়ে উঠেছিল। “ইজরায়েল সম্পর্কে আমাদের দেশের নাগরিকরা যে মত ও ধারণা পোষণ করেন, তাঁদের অনেকের সঙ্গেই আমি একমত। ইউএসবি ফ্ল্যাশ ড্রাইভ থেকে শুরু করে চেরি টোমাটো উৎপাদন পর্যন্ত বিস্তৃতি এই কল্যাণ প্রচেষ্টার। ইজরায়েল যেভাবে তীব্র জল কষ্টের একটি দেশ থেকে উদ্বৃত্ত একটি জলের দেশে নিজের রূপান্তর ঘটিয়েছে এবং যেভাবে তার মরুভূমিকেও করে তুলেছে উর্বরভূমি, তা সত্যিই এক বিস্ময়কর সাফল্য। ইজরায়েলের এই সমস্ত টুকরো টুকরো ছবি গেঁথে রয়েছে আমার মনের গভীরে। প্রশ্ন : এই ঐতিহাসিক সফরকে ঘিরে আপনি এত উৎসাহী কেন ? “আমাদের এই দুটি দেশের মধ্যে সম্পর্ক বরাবরই বেশ শক্তিশালী। সত্যি কথা বলতে কি, এই সম্পর্কের ক্রমপ্রসার ও বৈচিত্র্য আমরা লক্ষ্য করছি বহু বছর ধরেই। আমাদের এই শক্তিশালী সম্পর্কের নিরন্তর প্রবাহ ও প্রতিফলন দেখা গেছে সাম্প্রতিককালের উচ্চ পর্যায়ের সফরগুলির মধ্যে। আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে গত তিন বছরে আমাদের সফর বিনিময় কর্মসূচি বাস্তবায়িত হয়েছে আরও ঘন ঘন। ২০১৫ সালে আমাদের রাষ্ট্রপতির ইজরায়েল সফরের পূর্বে আর কোন ভারতীয় রাষ্ট্রপতি বা প্রধানমন্ত্রী ঐ দেশ সফর করেননি। ২০১৬-তে প্রেসিডেন্ট রুভেন রিভলিনের ভারত সফর ছিল দ্বিতীয় ইজরায়েলি প্রেসিডেন্টের এ দেশ সফর। আমার আসন্ন ইজরায়েল সফর আমাদের দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থার শতাব্দী প্রাচীন গভীর সম্পর্কের কথাই স্মরণ করিয়ে দেয়। আমার মনে হয়, এ বছর আমরা যখন দু’দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ২৫ বর্ষপূর্তি উদযাপন করতে চলেছি, তখন দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে তা এক নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে আমাদের কাছে।” প্রশ্ন : আপনার এই সিদ্ধান্ত কি রাষ্ট্রসঙ্ঘে ইজরায়েলের সমর্থনে আপনাদের অবস্থানকেই তুলে ধরবে ? “রাষ্ট্রসঙ্ঘে আমাদের অবস্থানের মূলে রয়েছে সুনির্দিষ্ট বিষয়গুলির পেছনে যুক্তি যা চালিত হয়েছে আমাদের নীতি ও মূল্যবোধগুলির মাধ্যমে। রাষ্ট্রসঙ্ঘে কোন দেশকে বিচ্ছিন্ন বা একঘরে করে রাখার পক্ষপাতী নয় ভারত।” প্রশ্ন : ভারত কি এখনও নিজেকে প্রাচ্য বা পাশ্চাত্য উভয় দিক থেকেই জোট নিরপেক্ষ বলে মনে করে ? পূর্ব বা পশ্চিম যাই হোক না কেন, সবক’টি দেশের সঙ্গেই আমরা গঠনমূলক কাজকর্মের মধ্য দিয়ে যুক্ত হতে আগ্রহী। প্রশ্ন : আপনি কি মনে করেন যে ভারত ও ইজরায়েল একই ধরনের সন্ত্রাসের সম্মুখীন ? সন্ত্রাসবাদ এখন সমগ্র বিশ্বের একটিসমস্যা। ভারত এবং ইজরায়েলও তা থেকে মুক্ত নয়। আমরা সকলেই চুক্তিবদ্ধ যে যে সমস্ত শক্তি নিরীহ মানুষের ওপর হিংসার আঘাত হানতে উদ্যত, তাদের কোনভাবেই আর বাড়তে দেওয়া হবে না। আন্তঃসীমান্ত সন্ত্রাস আমাদের কাছে একটি বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। সীমান্ত বরাবর বিভিন্ন বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তি দেশের ঐক্যকে বিনষ্ট করতে চাইছে। যারা এ ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে উদ্যত, তারা প্রায়ই ধর্মের অপব্যবহারের মাধ্যমে তাকে একটি হাতিয়ার করে তুলতে চায় আমাদের দেশ এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের তরুণ প্রজন্মকে বিপথগামী করার উদ্দেশ্য নিয়ে। কোন একটি বিশেষ ধর্মের তকমা দিয়ে সন্ত্রাসকে আখ্যা দেওয়া যায় না। আমার সফরের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে সম্পর্কের বাতাবরণকে আরও নিবিড় করে তোলা। হ্যাঁ, আমি যে জেরুজালেম সফর করব তা এক প্রকার নিশ্চিত। প্রশ্ন : জেরুজালেমের সার্বভৌমত্বের প্রশ্নে আপনার অবস্থান কি ? সেখানকার ভারতীয় দূতাবাস কি সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে ? আমরা দুটি রাষ্ট্রের নিজস্ব সমাধানসূত্রে বিশ্বাস করি যেখানে ইজরায়েল এবং ভবিষ্যতের প্যালেস্টাইন শান্তিপূর্ণভাবে সহাবস্থান করবে। চূড়ান্ত পর্যায়ের চুক্তিটিতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের দাবি ও আবেগের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হওয়া প্রয়োজন। এই সমস্যা সমাধানের মূল চাবিকাঠি লুকিয়ে রয়েছে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির কাছেই। জেরুজালেম সহ অমীমাংসিত বহু বিষয়েরই এক গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করার কাজে সমস্ত ধরনের প্রচেষ্টাকেই সমর্থন জানাবে ভারত। আমার মনে হয়, তেল আভিভে আমাদের দূতাবাস সম্পর্কেই প্রশ্নটি আপনি তুলেছেন। জেরুজালেম প্রশ্নে দু’পক্ষই মীমাংসা চুক্তিতে উপনীত হওয়ার পরই আমরা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেব। বিশ্ব সম্পর্কে আপনার দৃষ্টিভঙ্গির মূলে কি রয়েছে তা যদি একটু ব্যাখ্যা করেন। দেখুন, কোনরকম অমুকবাদ, তমুকবাদে আমি বিশ্বাসী নই। আমি এবং আমার সরকার কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে একটি মন্ত্রই মেনে চলি আর তা হল ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’। দেশের তরুণ প্রজন্মকে আমরা কর্মপ্রার্থী হিসেবে দেখতে আগ্রহী নই, আমরা তাঁদের দেখতে ইচ্ছুক কর্মদাতার ভূমিকায়। তরুণ প্রজন্মের মধ্যে উদ্ভাবন ও শিল্পোদ্যোগের যে সম্ভাবনা রয়েছে তার বিকাশে আমরা প্রয়োজনে সকল রকম ব্যবস্থাই গ্রহণ করব। কোন কাজ সমর্থন করা বা এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ক্ষেত্রে আমার মাপকাঠি হল তা থেকে দেশবাসীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আখেরে আমাদের কি লাভ হবে সেই দিকটি সম্পর্কে ভেবে দেখা। এই বিষয়টিকে যদি আমরা সর্বাগ্রে স্থান দিই তাহলে তার ফল হবে কিন্তু বেশ লাভজনক। প্রশ্ন :উপযুক্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থার অভাব রয়েছে, এ ধরণের প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে আধুনিক প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহারের মাধ্যমে আপনি পর্যায়ক্রমে ভারতীয় সমাজ ব্যবস্থার সংস্কারসাধনে সচেষ্ট রয়েছেন। আপনার এই প্রচেষ্টায় ইজরায়েল কি কোনওভাবে কোনও রকম ভূমিকা পালন করতে পারে? আমাদের এই রূপান্তর প্রক্রিয়ায় এক প্রযুক্তিগত অংশীদার হয়ে উঠতে পারে ইজরায়েল। গঙ্গা শোধন কর্মসূচি (অর্থাৎ গঙ্গানদীকে দূষণমুক্ত করার প্রচেষ্টা) এবং স্মার্ট নগরীরমতো প্রধান প্রধান প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে সাহায্য করার মতো যথেষ্ট ক্ষমতা ও দক্ষতা রয়েছে ইজরায়েলের। আমাদের দেশের কোটি কোটি মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ইজরায়েলি প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার সম্ভব যদি ইজরায়েলের উদ্ভাবন প্রচেষ্টাকে আমাদের দেশের গ্রামীণ জনসাধারণের প্রয়োজন ও চাহিদা পূরণের উপযোগী করে তোলা সম্ভব হয়। গ্রামীণ পর্যায়ে বাজারের চাহিদা ও প্রবণতার বিষয়টি উপলব্ধি করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। প্রশ্ন :কৃষি ও ব্যবসা-বাণিজ্য সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ও ইজরায়েলের প্রচেষ্টাগত দৃষ্টিভঙ্গীতে কোন্‌ কোন্‌ পার্থক্য রয়েছে বলে আপনার মনে হয়? ভারত এবং ইজরায়েল দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থাতেই এক বলিষ্ঠ শিল্পোদ্যোগ মানসিকতা কাজ করে। প্রশ্ন :একজন সাধারণ মানুষকে আমরা কিভাবে ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে প্রচেষ্টাবদ্ধ হওয়ার বিষয়টি ব্যাখ্যা করতে পারব? উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে আমাদের প্রেক্ষিত হয়তো ভিন্ন হতে পারে কিন্তু সমাজে সম্পদ ও মূল্যবোধের প্রসারের মতো বিষয়টির ওপর দুটি দেশেরই যথেষ্ট আস্থা ও বিশ্বাস রয়েছে। সত্যি কথা বলতে কি, ভারতীয় এবং ইজরায়েলিরা জন্মগতভাবেই উদ্ভাবন-প্রবণ। উদ্ভাবন প্রচেষ্টার উপযোগী এক অনুকূল পরিবেশ ধরে রাখার কাজে দুটি দেশই সমানভাবে কাজ করে। আমাদের সাধারণ প্রচেষ্টা হ’ল উদ্ভাবনী সৃজনশীলতাকে শিল্পোদ্যোগ ক্ষমতার সঙ্গে যুক্ত করা। প্রশ্ন :ইজরায়েল থেকে ঠিক কোন্‌ কোন্‌ পণ্য আমদানি করতে ভারত আগ্রহী? ইজরায়েলের সঙ্গে প্রথগত আমদানি-রপ্তানি সম্পর্কে যুক্ত হতে আমরা আগ্রহী নই। ক্রেতা-বিক্রেতার স্বাভাবিক সম্পর্কের অনেক উর্ধ্বে রয়েছে আমাদের এই দুটি দেশের সম্পর্ক। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপের মাধ্যমে প্রযুক্তি-ভিত্তিক এক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে আমরা আগ্রহী। গঙ্গাকে দূষণমুক্ত করার কর্মসূচির মতো আমাদের বহু প্রধান প্রধান প্রকল্পের বিষয়ে ইজরায়েলি শিল্প সংস্থাগুলির দৃষ্টিভঙ্গী যথেষ্ট ইতিবাচক। তাই, ভারতের প্রধান প্রধান কর্মসূচিতে ঐ দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক প্রসারের ক্ষেত্রও রয়েছে যথেষ্ট বিশাল। ভারতের বিভিন্ন অঞ্চলে এখন উৎসবের মরশুম। এই উপলক্ষে কয়েকটি ট্যুইট বার্তায় দেশবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তামিলনাড়ুতে এখন পালিত হচ্ছে পুথান্ডু। এই বছরটি সুখ, সুস্বাস্থ্য ও সমৃদ্ধি বহন করে আনুক এই প্রার্থনা জানাই।” এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “বিশু উৎসবের বিশেষ মুহূর্তে কেরলের অধিবাসীদের জানাই আমার শুভেচ্ছা। আগামী বছরটি আপনাদের সকলের কাছে আনন্দ ও স্বাস্থ্যময় হয়ে উঠুক এই প্রার্থনা জানাই।” এই প্রক্রিয়ার ফলে পুরনো ইলেক্ট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম)-গুলিপর্যায়ক্রমে বাতিল করে দেওয়া হবে। এগুলি সংগ্রহ করা হয়েছিল ২০০০-০৫ – এই সময়কালে।প্রয়োজনে নতুন ইউনিট সংগ্রহের ক্ষেত্রে সংখ্যার হেরফের ঘটানো প্রয়োজন মনে করলে সেসম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে নির্বাচন কমিশনকে। আজ বেঙ্গালুরুর জিগানি-তে ‘যোগ গবেষণা ও তার প্রয়োগের ক্ষেত্রে পথিকৃৎ’ সম্পর্কিত এক আন্তর্জাতিক সম্মলনের উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই বছরটি যোগ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ বছর বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। শ্রী মোদী বলেন, গত ২১ জুন বিশ্বের ১৯০টি দেশের ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষ প্রথম আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনে সমবেত হয়েছিলেন। এই ঘটনাই প্রমাণ করে যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে যোগাভ্যাস ক্রমশই জনপ্রিয়তা লাভ করে চলেছে। শুধু তাই নয়, সুস্বাস্থ্য ও ভালো থাকার জন্য সকলের মধ্যেই যে আশা-আকাঙ্ক্ষা রয়েছে এই ঘটনা তারই প্রতীক দৃষ্টান্ত। সুপ্রাচীন যোগ বিজ্ঞানের অস্তিত্ব মানুষের এই ঐক্যসাধনের মধ্যেই আমরা খুঁজে পেতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাভ্যাস যে বিশ্বে ক্রমেই স্বীকৃতি লাভ করছে এই ঘটনা তারই প্রমাণ। দেশ, কাল, সংস্কৃতি ভেদে জীবনকে নতুন করে ঢেলে সাজাতে, অন্তরাত্মার সঙ্গে বাইরের জগতের মেলবন্ধন ঘটাতে এবং পরিবেশের সঙ্গে তাদের জীবনধারণকে সম্পৃক্ত করে তুলতে মানুষ যে ক্রমশ যোগের প্রতি আকৃষ্ট হচ্ছে এ সমস্ত কিছু তারই প্রতিফলন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে রোগ-ব্যাধি সম্পর্কে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংগঠনের তথ্য ও প্রতিবেদনে প্রকাশ, সংক্রামক নয় এমন বহু রোগ বিশ্বে মৃত্যুর ঘটনার সবচেয়ে বড় কারণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০৩০-এর আগে এই ধরনের অ-সংক্রামক ব্যাধি ও মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতির কারণে ভারতকে ৪.৫৮ ট্রিলিয়ন ডলার ক্ষতি স্বীকার করতে হবে বলে কয়েকটি সমীক্ষায় প্রকাশ। এই কারণেই ব্যবহারিক ও বস্তুগত জীবনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের জাগতিক অস্তিত্বের তথা মানসিক অবস্থার দিকেও অবশ্যই নজর দিতে হবে। আর এক্ষেত্রে রয়েছে যোগাভ্যাসের এক অনবদ্য অবদান। যোগাভ্যাস যে মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন সম্ভব করে তুলেছে এবং আশা-আকাঙ্ক্ষাকে নতুন করে জাগিয়ে তুলেছে তার নজির রয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। ভারতীয় যোগাভ্যাস ভবিষ্যতে মানুষের জীবনকে আরও সচল ও গতিময় করে তুলবে – শ্রী অরবিন্দের এই বাণী আজ সার্থকতা লাভ করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীতে শৃঙ্খলাকে চিকিৎসার একটি অঙ্গ বলে মনে করা হত না। কিন্তু মেধা, আবেগ, নীতি ও আধ্যাত্মিক সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে সামগ্রিকভাবে মানুষের শারীরিক তথা মানসিক জীবনশৈলী গড়ে উঠতে সাহায্য করে একমাত্র যোগাভ্যাসই এবং এর মধ্য দিয়েই সুস্বাস্থ্যের সুফলগুলি লাভ করা সম্ভব। স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিশ্বে এখন যে নতুন সংজ্ঞা নির্ধারিত হচ্ছে তার মধ্যেই খুঁজে পাওয়া যায় এই সত্যটি। শুধুমাত্র রোগ প্রতিরোধের বিষয়টি নিয়েই আমরা এখন সন্তুষ্ট থাকতে পারি না। প্রথাগত ভারতীয় চিকিৎসা ব্যবস্থায় মানুষকে সামগ্রিক দৃষ্টিকোণ থেকেই বিচার করা হয়। ‘আধি’ অর্থাৎ, মানসিক সমস্যা এবং ‘ব্যাধি’ অর্থাৎ, শারীরিক সমস্যা – এই দুটির মধ্যে যোগসূত্র খুঁজে দেখা হয় ভারতের প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবস্থায়। সুফল পেতে হয়তো কিছু বিলম্ব ঘটে, কিন্তু চিকিৎসা হয় একেবারে গভীর থেকে এবং সুফল হয় দীর্ঘস্থায়ী। শুধু তাই নয়, এই ধরনের চিকিৎসায় কোনরকম পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া থাকে না। সুপ্রাচীন জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মতোই বিজ্ঞানও যে মানুষের অভিজ্ঞতা এবং প্রকৃতি অনুসন্ধানের ফলশ্রুতি একথা তিনি বিজ্ঞান কংগ্রেসের অধিবেশনে তুলে ধরেছেন বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুগে যুগে যে প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতার ভাণ্ডার আমরা সযত্নে রক্ষা করে এসেছি তার সঙ্গে আধুনিক বিজ্ঞানের প্রযুক্তি ও পদ্ধতির সমন্বয় ঘটাতে হবে যাতে তার ফল হয় সুদূরপ্রসারী এবং নির্দিষ্ট গুণ ও সুফলগুলি থাকে পুরোপুরি অক্ষত। আর এই কারণেই আয়ূষ চিকিৎসা ব্যবস্থা সম্পর্কে সচেতনতা প্রসারের ওপর আমরা বিশেষভাবে জোর দিয়েছি যাতে এই চিকিৎসা ব্যবস্থাকে মানুষ সাদরে গ্রহণ করতে পারে। এই কাজ করতে গিয়ে মানুষকে সুস্থ ও রোগমুক্ত করার দিকে আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে, সেইসঙ্গে স্থানীয় সহায়সম্পদের ওপর বেশি মাত্রায় নির্ভরশীল থেকে স্বাস্থ্য পরিচর্যা খাতে ব্যয়ের মাত্রাও কমিয়ে আনতে হবে। একইসঙ্গে পরিবেশ-বান্ধব এক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন যাতে সামাজিক তথা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে ব্যয়সাশ্রয় সম্ভব হয়ে ওঠে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কোন চিকিৎসা ব্যবস্থার শ্রেষ্ঠত্ব সম্পর্কে মত প্রতিষ্ঠা তাঁর উদ্দেশ্য নয়। কারণ, বৈচিত্র্যের কারণেই মানবজীবন আজ সমৃদ্ধ। জ্ঞান ও প্রজ্ঞার বিনিময়ের মধ্য দিয়েই ঋদ্ধ হয়েছে বিভিন্ন দেশের সভ্যতা ও সংস্কৃতি। তাই, পরস্পরের কাছ থেকে বিভিন্ন বিষয়ে শিক্ষা গ্রহণের মধ্য দিয়েই আমাদের অগ্রগতি সম্ভব। এই লক্ষ্যেই প্রাচ্য ও পাশ্চাত্যের যা কিছু শ্রেষ্ঠ তার মধ্যে সমন্বয়ের আহ্বান জানিয়েছিলেন স্বামী বিবেকানন্দ। সুতরাং, স্বাস্থ্যের বিষয়টি আমাদের মূল ক্ষেত্রগুলির অন্যতম। বিভিন্ন ঐতিহ্য ও প্রথার শ্রেষ্ঠ এবং বেশি ফলদায়ক ব্যবস্থাগুলি নিয়ে এক সুসংহত ব্যবস্থা গড়ে তোলাই তাঁর লক্ষ্য বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, এগুলি এমনই বিষয় যা তাঁর অন্তরকে স্পর্শ করে। ওষুধ এবং প্রতিষেধকের ক্ষেত্রে যে যুগান্তকারী আবিষ্কার সম্ভব হয়েছে তা বহু রোগ-ব্যাধি জয় করার ক্ষেত্রে মানুষকে আজ সাফল্য এনে দিয়েছে। কিন্তু এই চিকিৎসার সীমাবদ্ধতা এবং তার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া সম্পর্কে আমরা যখন আরও বেশি করে জানতে পারছি, আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্রমবর্ধমান ব্যয়ের মাত্রাও যখন আমাদের চিন্তার মধ্যে ফেলে দিয়েছে তখন শুধুমাত্র ভারতে নয়, বিশ্বের অন্যত্রও বিকল্প চিকিৎসার খোঁজ আমাদের করতেই হবে। আর এই কারণেই যোগাভ্যাস তথা যোগ চিকিৎসা ক্রমশই জনপ্রিয়তা লাভ করে চলেছে। যোগ চিকিৎসা বিশ্বের এক ঐতিহ্য। ভারতের এই সুপ্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থাকে বিশ্ববাসী এখন সাদরে গ্রহণ করছে। তাই, মানুষের সেবায় ভবিষ্যতের পথ নির্ধারণে এই সম্মেলন সফল হবে সেই অপেক্ষাতেই রয়েছি আমরা। স্বাস্থ্য সম্পর্কে পেশাদার বিশেষজ্ঞ, নীতি রচয়িতা, সরকারি সংস্থা ও শিল্প প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন চিকিৎসাপদ্ধতির মধ্যে সমন্বয়সাধনের লক্ষ্যে এগিয়ে আসবে বলেই আমার বিশ্বাস। এর মধ্য দিয়েই মানুষের উন্নততর সুখ ও স্বাস্থ্যের সুচনা ঘটবে এবং এক নিরন্তর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে শান্তি ও সমৃদ্ধির বাতাবরণ গড়ে উঠবে সমগ্র বিশ্বে এই আশা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও ইরানের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রেসহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের ত্রুটিগুলি দূর করার জন্য একটিবিশেষজ্ঞ গোষ্ঠী স্থাপনের প্রস্তাব কর্মপরবর্তীভাবে অনুমোদিত হয়েছে। ২০১৮’র ১৭ফেব্রুয়ারি ইরানের রাষ্ট্রপতির ভারত সফরের সময়ে এই বিষয়ে একটি সমঝোতা স্বাক্ষরিতহয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ ৬০ হাজার কোটি টাকার জাতীয় নগর আবাসন তহবিল গড়ার প্রস্তাবেমঞ্জুরি দেওয়া হয়েছে। এই তহবিল কেন্দ্রীয় আবাসন ও নগর বিষয়ক মন্ত্রকের আওতাধীনস্বশাসিত সংস্হা নির্মাণ সামগ্রী ও প্রযুক্তি উন্নয়ন পর্ষদ (বিএমটিপিসি)-র কাছেথাকবে। মন্ত্রক এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (নগর)-এর আওতায় ৩৯.৪লক্ষ বাড়ি নির্মাণের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিথেকে ভালো সাড়া পাওয়া গেছে, আর প্রত্যেক মাসে গড়ে প্রায় ২-৩ লক্ষ বাড়ি তৈরির প্রস্তাবকেঅনুমোদন করা হয়েছে। এ পর্যন্ত ১৭ লক্ষের-ও বেশি বাড়ি তৈরির কাজ চলছে এবং প্রায় ৫লক্ষ বাড়ির কাজ শেষ হয়ে গেছে। ঋণযুক্ত ভর্তুকি প্রকল্পে (সিএলএসএস) যেখানেঅর্থনৈতিকভাবে দুর্বল / এলআইজি / এমআইজি সুবিধাভোগীদের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (নগর)-এর আওতায় ব্যাঙ্কঅথবা হাউসিং ফিনান্স কর্পোরেশনগুলি অর্থ জুগিয়ে থাকে সেক্ষেত্রেও উল্লেখযোগ্যসাড়া পাওয়া গেছে। এই প্রকল্পে গত ৮ মাসে প্রায় ৮৭ হাজার আবাসন ঋণ অনুমোদিত হয়েছে।আরও ৪০ হাজারেরও বেশি আবেদনপত্র মঞ্জুরির অপেক্ষায় রয়েছে। ২০২২ সালের মধ্যে অর্থাৎস্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপনকালের মধ্যে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ আবাসন চাহিদাপূরণ করা এবং প্রত্যেককে আবাসন যোগানোই লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার (২৩ আগস্ট) গুজরাট সফর করবেন। ভালসাদ জেলার জুজওয়া গ্রামে এক বিরাট জনসমাবেশে শ্রী মোদী কেন্দ্রীয় সরকারের সকলের জন্য গৃহ সংক্রান্ত ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচি প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (গ্রামীণ) সুবিধাভোগীদের সমবেত ‘ই-গৃহ প্রবেশ’ প্রত্যক্ষ করবেন। এই কর্মসূচির মাধ্যমে গুজরাটে ১ লক্ষেরও বেশি বাড়ি নির্মিত হয়েছে। রাজ্যের ২৬টি জেলার সুবিধাভোগীরা সমবেতভাবে ‘ই-গৃহ প্রবেশ’-এ সামিল হবেন। ভালসাদে দক্ষিণ গুজরাটের ৫টি জেলা – ভালসাদ, নভসারি, তাপি, সুরাট ও দঙ্গস-এর গৃহ প্রাপকরা একত্রিত হবেন। বাকি জেলাগুলিতে সমবেত ‘ই-গৃহ প্রবেশ’ ব্লক পর্যায়ে উদযাপিত হবে। ভালসাদে আয়োজিত মূল অনুষ্ঠানের সঙ্গে ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে ঐ জেলাগুলির সুবিধাভোগীদেরকেও সামিল করা হবে। অনুষ্ঠানে ২ লক্ষেরও বেশি মানুষ অংশ নেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প যেমন – দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল বিকাশ যোজনা, মুখ্যমন্ত্রী গ্রামোদয় যোজনা ও জাতীয় গ্রামীণ জীবন-জীবিকা মিশনের নির্দিষ্ট কয়েকজন সুফলভোগীকে শংসাপত্র ও কর্মনিযুক্তিপত্র প্রদান করবেন। এছাড়াও, তিনি মহিলা ব্যাঙ্ক করেসপনডেন্টস-দের হাতে নিয়োগপত্র ও মিনি এটিএম তুলে দেবেন। এই উপলক্ষে এক সমাবেশেও তিনি ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী জুনাগড়ে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে – জুনাগড়ে একটি সরকারি হাসপাতাল; জুনাগড় পুন নিগমের ১৩টি প্রকল্প এবং খোখারদা-তে একটি দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণ কেন্দ্র। এখানেও তিনি এক জনসমাবেশে ভাষণ দেবেন। এরপর, প্রধানমন্ত্রী গান্ধীনগরে গুজরাট ফরেন্সিক বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তনে ভাষণ দেবেন। নয়াদিল্লিতে ইন্ডিয়া গেট-এর কাছে প্রিন্সেস পার্কে জাতীয় যুদ্ধ স্মৃতিসৌধ ও জাতীয় যুদ্ধ সংগ্রহশালা নির্মাণের প্রস্তাবে আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে | স্বাধীনোত্তর কালে যে সমস্ত বীর সেনানী দেশের জন্য জীবন বিসর্জন দিয়েছেন তাঁদের স্মৃতিতে এই সৌধ ও সংগ্রহশালা নির্মাণ করা হবে | এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় ধরা হয়েছে ৫০০ কোটি টাকা এবং আনুমানিক পাঁচ বছরের মধ্যে এর নির্মাণ কাজ সম্পূর্ণ হবে | চুক্তির শর্ত অনুযায়ী, মেয়াদের শেষে পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য চুক্তিটি পুনর্নবীকরণযোগ্য। এই প্রসঙ্গে কয়েকটি ট্যুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন : “২০১৭-র ২৮থেকে ৩০ নভেম্বর হায়দরাবাদে অনুষ্ঠেয় শিল্পোদ্যোগ সম্পর্কিত বিশ্ব শীর্ষ বৈঠকযুগ্মভাবে আয়োজন করছে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। শিল্পোদ্যোগীএবং স্টার্ট আপ কর্ণধারদের কাছে এই শীর্ষ বৈঠক এক বিশেষ সুযোগ এনে দেবে বিশ্বনেতৃবৃন্দের সঙ্গে মুখোমুখিআলোচনা ও মতবিনিময়ের লক্ষ্যে। আজনয়াদিল্লিতে নবনির্মিত ওয়েস্টার্ন কোর্ট অ্যানেক্স ভবনের দ্বারোদ্ঘাটন করলেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। কাজের সূত্রে রাজধানীতে আগত সাংসদরা এইঅ্যানেক্স ভবনে সাময়িকভাবে অবস্থান করতে পারবেন। এই প্রকল্পরূপায়ণের প্রতিটি খুঁটিনাটি বিষয় সম্পর্কে তিনি ছিলেন খুবই সজাগ ও সতর্ক। প্রকল্পটিরকাজ যে নির্দিষ্ট সময় ও ব্যয়বরাদ্দ অনুসারে সম্পূর্ণ হয়েছে সে কথারও উল্লেখ করেনশ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই নির্মাণ প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সকলকেই এজন্য অভিনন্দনজানিয়েছেন তিনি। কেন্দ্রীয়সরকার ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের পথ ও আদর্শ অনুসরণ করে চলছে বলে উল্লেখ করেন শ্রীমোদী। তিনি বলেন, ডঃ আম্বেদকরের জীবনাদর্শের মূলমন্ত্রই ছিল ‘সম্প্রীতির সঙ্গেসহাবস্থান’। তাই, দেশের দরিদ্রতম মানুষটির জন্য কাজ করে যাওয়া তাঁর সরকারের একবিশেষ নীতি। প্রধানমন্ত্রীঘোষণা করেন যে নয়াদিল্লির ২৬, আলিপুর রোডের যে বাড়িটিতে বাবাসাহেব আম্বেদকর তাঁরশেষ জীবনে বসবাস করতেন, সেটি একটি স্মারক হিসেবে উদ্বোধন করা হবে বাবাসাহেবেরজন্মবার্ষিকীর প্রাক্কালে ১৩ এপ্রিল, ২০১৮ তারিখে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তরুণরা আজকে তাঁদের কাজের যে নিদর্শন তুলে ধরলেন তাতে এক অভিন্ন বিষয়ই পরিস্ফুট হয়ে উঠল। দেশে পরিবর্তন নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এ এক গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা বলে মনে করেন তিনি। নিষ্ঠা ও অধ্যবসায়ের সঙ্গে দেশের অনগ্রসর গ্রামীণ অঞ্চলে কাজ করার জন্য তরুণদের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নানা ধরনের প্রতিকূলতা এবং পারিবারিক চাপ সত্ত্বেও তরুণরা তাঁদের কাজে ছিলেন অবিচল ও নিষ্ঠাবান। এই কর্মসূচিটিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য সুনির্দিষ্ট মতামত ও পরামর্শও আহ্বান করেন শ্রী মোদী। কর্মরত তরুণদের কাজকর্মের অভিজ্ঞতাকে সম্বল করে রচিত ‘স্ক্রিপ্টিং চেঞ্জ’ বইটির আনুষ্ঠানিক প্রকাশও করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী সুকন্যাসমৃদ্ধি যোজনায় নির্বাচিত সুবিধাপ্রাপকদের সম্বর্ধনা জানান এবং উজ্জ্বলা যোজনায়নির্বাচিত সুবিধাপ্রাপকদের এল.পি.জি. সংযোগের কাগজ তুলে দেন| তিনি বারাণসী শহরকেনিয়ে স্মারক ডাক টিকিটের প্রকাশ করেন| অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীদেওয়ালি উপলক্ষে সেনা জওয়ানদের কাছে বার্তা পাঠানোর জন্য মানুষকে আহ্বান জানান| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রোয়ান্ডার রয়েরু আদর্শ গ্রামের যে সব বাসিন্দাদের একটাও গরু নেই, তাঁদের সব মিলিয়ে ২০০টি গরু উপহার দিলেন। রোয়ান্ডা সরকারের ‘গিরিঙ্কা’ কর্মসূচির এই অনুষ্ঠানে রোয়ান্ডার রাষ্ট্রপতি পল কাগামে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ‘গিরিঙ্কা’ কর্মসূচি এবং সেই সূত্রে রাষ্ট্রপতি পল কাগামের উদ্যোগেরও প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভারত থেকে বহুদূর রোয়ান্ডাতে গ্রামে গ্রামে অর্থনৈতিক ক্ষমতায়নের জন্য গরুকে এত গুরুত্ব দেওয়া হয়, ভারতীয়রা এই অপ্রত্যাশিত তথ্য জানলে আনন্দবোধ করবেন। দুটি দেশের গ্রামীণ জীবনধারার সামঞ্জস্যের কথাও তিনি জানান। রোয়ান্ডাতে ২০০৬ সালে ‘গিরিঙ্কা’ কর্মসূচি চালু করার পর থেকে হাজার হাজার মানুষ গরু পেয়েছেন। জুন, ২০১৬ পর্যন্ত দরিদ্র পরিবারগুলিকে মোট ২,৪৮,৫৬৬টি গরু দান করা হয়েছে। এই কর্মসূচি রোয়ান্ডার কৃষি উৎপাদনশীলতা, বিশেষ করে দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্যের উৎপাদন বাড়িয়েছে এবং অপুষ্টি কমেছে ও মানুষের আয়ও বেড়েছে। ‘গিরিঙ্কা’ কর্মসূচির আরেকটি লক্ষ্য, দেশে ঐক্যের প্রসার ও কর্মসূচির মূলে থাকা সাংস্কৃতিক ধারার ভিত্তিতে দাতা ও গ্রাহকের মধ্যে বিশ্বাস ও একে অপরের প্রতি সম্মানবোধ স্থাপন করা। এটি কর্মসূচির মূল লক্ষ্য না হলেও, পরবর্তীকালে এই বিষয়টি একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হয়ে ওঠে। কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের কয়েকটি বিশেষ মানদণ্ডের ভিত্তিতে বাছাই করা হয়। একজন রোয়ান্ডা সরকারের আধিকারিকের বক্তব্য অনুযায়ী, কর্মসূচির জন্য সেইসব দরিদ্র পরিবারগুলিকে বাছাই করা হয় যাদের গো-চারণের জমি থাকলেও একটিও গরু নেই। মুম্বাই এবং সন্নিহিত এলাকায় অবিশ্রান্ত বর্ষণের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার কথা বলেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্রফড়নবিশের সঙ্গে। “মুম্বাইএবং পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে অবিশ্রান্ত বর্ষণজনিত কারণে উদ্ভূত পরিস্থিতিসম্পর্কে আমি কথা বলেছি মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের সঙ্গে। রাজ্যেরবিভিন্ন অঞ্চলে ভারী বৃষ্টিপাতের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতির সামাল দিতে মহারাষ্ট্র সরকারকেসকলরকম সহায়তাদানের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে। মহামান্য প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে , গন্যমান্য অতিথিবৃন্দ , লেহ-তে তিনি ১৯তম কুশক বাকুলা রিনপোচে-এর জন্ম শতবার্ষিকী উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই অনুষ্ঠানেই প্রধানমন্ত্রী জোজিলা সুড়ঙ্গ পথের কাজের সূচনা করে ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। ১৪ কিলোমিটার দীর্ঘ জোজিলা সুড়ঙ্গ ভারতের দীর্ঘতম সড়ক সুড়ঙ্গ পথ এবং এশিয়ার সবথেকে বড় দ্বিমুখী সুড়ঙ্গ পথ হয়ে উঠবে। নির্মাণ কাজ শেষ হলে এই সুড়ঙ্গ পথ শ্রীনগর, কার্গিল ও লেহ-এর মধ্যে সব মরশুমের উপযোগী সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা প্রদান করবে। এই অঞ্চলের সার্বিক আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ও সামাজিক-সাংস্কৃতিক ঐক্য বজায়ের ক্ষেত্রও এই প্রকল্পটি গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। এছাড়াও, এই সুড়ঙ্গ পথের ব্যাপক কৌশলগত গুরুত্ব রয়েছে। এক বিরাট জনসমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ১৯তম কুশক বাকুলা রিনপোচে-এর মহান আবদানের কথা স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্যের সেবার জন্যই তিনি তাঁর জীবন উৎস্বর্গ করেছিলেন। ১৯তম কুশক বাকুলা রিনপোচে-কে এক অসাধারণ কূটনৈতিক হিসেবেও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, মোঙ্গলিয়ায় তাঁর সফরের সময় তিনি নিজেই রিনপোচের সদিচ্ছার বিষয়টি প্রত্যক্ষ করেছিলেন। জম্মু ও কাশ্মীরের তিনটি অঞ্চলই তিনি সফর করছেন বলে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জম্মু ও কাশ্মীর ২৫ হাজার কোটি টাকার উন্নয়নমূলক প্রকল্প পেতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে জলযানের মাধ্যমেযাত্রী ও পর্যটকদের নিয়মিত যাতায়াত শুরু করার জন্য দু’দেশের মধ্যেকার উপকূলীয় ওচুক্তিকৃত পথে যাত্রীবাহী ক্রুজ পরিষেবা নিয়ে সমঝোতা স্মারকে (মউ) অনুমোদন দিল| এর ফলে, আন্তর্জাতিক চাহিদা ও মান অনুযায়ী সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ভারত নিজেকে গড়ে তুলতে পারবে। এছাড়াও, সদস্য রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে ভারত বেশ কয়েকটি কর্মসূচি রূপায়ণের সুযোগও লাভ করবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ভারতের রয়েছে এক বিস্তৃত উপকূলরেখা। ‘ভাইব্র্যান্টগুজরাট’ শীর্ষ সম্মেলনে আমি আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাই। সকলের জন্য এক সফল,আনন্দময় ও সমৃদ্ধ নববর্ষও আমি কামনা করি। ২০০৩ সালে খুবই সাধারণভাবে সূচনা হয় এইঅনুষ্ঠানটির। তারপর থেকেই এই সম্মেলন বিশেষভাবে সফল হয়ে আসছে ধারাবাহিকতার সঙ্গেই। ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’-এর সূচনাকালের দুই সহযোগী দেশ জাপান ও কানাডাকেআমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। এইঘটনার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে বিশ্বের বহু নামকরা প্রতিষ্ঠান। এই অংশীদারিত্বের জন্যআমি আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দ তথা তরুণ শিল্পোদ্যোগীদেরকাছে আপনাদের এই উপস্থিতি বিশেষ উৎসাহ-উদ্দীপনার কারণ। বিশেষকরে, বিগত তিনটি সম্মেলন ছিল বেশ বড় আকারের। ১০০টিরও বেশি দেশের রাজনীতি ও বাণিজ্যজগতের কর্ণধারদের উপস্থিতি এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের সংস্থা ও সংগঠনগুলিরএকত্র সমাবেশ এই সম্মেলনকে প্রকৃত অর্থেই আন্তর্জাতিকতার মর্যাদা এনে দিয়েছে। সম্মেলনেঅংশগ্রহণকারী সকলের কাছেই আমি এই মর্মে আবেদন জানাব যে আপনারা সকলেই সংযোগ ওযোগাযোগ রক্ষা করুন পরস্পরের সঙ্গে। মহাত্মাগান্ধী এবং সর্দার প্যাটেলের জন্মস্থান গুজরাট ভারতের বাণিজ্য শক্তিরইপ্রতিনিধিত্ব করে। বহু বছর ধরেই বাণিজ্য ও শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রে নেতৃত্বদান করেআসছে এই রাজ্যটি। বহু শতাব্দী আগে সুযোগের সন্ধানে এখানকার অধিবাসীরা পাড়ি দিতেনসাত সমুদ্র অতিক্রম করে। এমনকি আজও এই রাজ্য গর্ব অনুভব করতে পারে একথা চিন্তা করেযে এই রাজ্যেরই এক বিরাট সংখ্যক মানুষ বিদেশে বসবাসের মাধ্যমে সেখানকারকর্মপ্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত রয়েছেন। তাঁরা যেখানে যেখানে পাড়ি দিয়েছেন, গড়েতুলেছেন একটি করে মিনি গুজরাট। গুজরাটেএখন অনুষ্ঠিত হচ্ছে ঘুড়ি উৎসব। এই ঘটনা আমাদের আরও উঁচুতে উঠতে অনুপ্রাণিত করুক। আমিবরাবরই বলে এসেছি যে ভারতের মূল শক্তি মূলত তিনটি ‘ডি’-এর ওপর দাঁড়িয়েরয়েছে : ডেমোক্র্যাসি,ডেমোগ্রাফি এবং ডিমান্ড (অর্থাৎ, গণতন্ত্র, জনগোষ্ঠী এবং প্রয়োজন তথা চাহিদা)। গণতন্ত্রের গভীরতাই হল আমাদেরসবথেকে বড় শক্তি। অনেকেই বলে থাকেন যে সফল ও দ্রুত প্রশাসন গণতন্ত্রে কখনই সম্ভবনয়। কিন্তু গত আড়াই বছরে আমরা লক্ষ্য করেছি যে একটি গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানেওদ্রুত ফললাভ সম্ভব হয়ে উঠতে পারে। বিগতআড়াই বছর ধরে রাজ্যগুলির মধ্যে সুস্থ প্রতিযোগিতার এক সংস্কৃতি ও বাতাবরণ গড়েতুলেছি আমরা। সুপ্রশাসনের মাপকাঠি হয়ে উঠছে রাজ্যগুলি। আমাদের এই প্রচেষ্টায়সহায়তা করছে বিশ্ব ব্যাঙ্ক। এবারআসি ভারতের জনগোষ্ঠীর কথায়। ভারতের রয়েছে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত এক যুবশক্তি।ভারতের মেধাবী, একনিষ্ঠ এবং শৃঙ্খলাপরায়ণ তরুণ ও যুবকরা বিশ্বে হয়ে উঠেছেন একঅতুলনীয় কর্মশক্তির প্রতীক। যেজলরাশির বেষ্টনী ঘিরে রয়েছে ভারতীয় ভূখণ্ডকে, তা আমাদের যুক্ত করেছে আফ্রিকা,মধ্যপ্রাচ্য এবং ইউরোপ সহ বিশ্বের বড় বড় বাজারগুলির সঙ্গে। প্রকৃতিওআমাদের পক্ষে বিশেষ সদয় ও অনুকূল। আমাদের তিনটি শস্য মরশুমে উৎপন্ন হয় প্রচুরখাদ্যশস্য, শাকসব্জি ও ফলমূল। উদ্ভিদও প্রাণীজগতে আমাদের রয়েছে এক অতুলনীয় বৈচিত্র্য । আমাদের সংস্কৃতি এবং জীবনযাত্রার প্রতীকের মধ্যেরয়েছে এক বিশেষ সমৃদ্ধি যা এক কথায় অতুলনীয় এবং অসামান্য। দেশের বিদগ্ধজন ওপ্রাতিষ্ঠানিকতা স্বীকৃতি লাভ করেছে সারা বিশ্বেই। গবেষণা ও উন্নয়ন প্রচেষ্টায়ভারত এখন রূপান্তরিত হয়েছে উন্নয়নশীল এক বিশেষ কেন্দ্রে। দেশের দ্বিতীয় সর্বোচ্চসংখ্যক বিজ্ঞানী ও প্রযুক্তিবিদ গড়ে তুলেছে আমাদের দেশই। আমাদেরবিনোদন জগৎ আলোড়ন তুলেছে বিশ্ব জুড়ে। এ সমস্ত কিছুই অপেক্ষাকৃত ব্যয়সাশ্রয়ের মধ্যদিয়ে জীবনযাত্রার উন্নত মান সম্ভব করে তুলেছে। মূলতঃ,স্বচ্ছ প্রশাসন নিশ্চিত করে তোলা এবং দুর্নীতি ও যথেচ্চাচার দূর করার প্রতিশ্রুতিরমধ্য দিয়েই নির্বাচিত হয়েছে আমাদের সরকার। দেশের রাজনীতি তথা অর্থনীতিতে এক আমূলপরিবর্তন সম্ভব করে তোলাই আমাদের লক্ষ্য ও চিন্তাদর্শ। এই লক্ষ্যে দফায় দফায়আলোচনার পাশাপাশি বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করেছি আমরা। এই রূপান্তর প্রক্রিয়ারসঙ্গে কিভাবে যুক্ত রয়েছি আমরা তার কিছু কিছু দৃষ্টান্ত আমি এখানে তুলে ধরছি : আমাদেরএই কর্মপ্রচেষ্টায় ডিজিটাল প্রযুক্তি এক বিশেষ ভূমিকা পালন করে চলেছে। সিদ্ধান্ত গ্রহণেরক্ষেত্রে অনলাইন প্রক্রিয়া যথেষ্ট গতি ও স্বচ্ছতা এনে দিতে পারে। এই লক্ষ্যে নতুননতুন প্রযুক্তিকে গ্রহণ ও চালু করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি আমরা যাতে বৈষম্যেরঅবসান ঘটিয়ে স্বচ্ছতাকে প্রতিষ্ঠা করা যায়। আপনারা আমার একথার ওপর আস্থা রাখতেপারেন যে বিশ্বের বৃহত্তম ডিজিটাল অর্থনীতির দোরগোড়ায় পৌঁছে গেছি আমরা। আপনাদেরঅনেকেই ভারতে এই ধরনের পরিবর্তনের প্রত্যাশা করেছিলেন। আমি আজ একথা ঘোষণা করতেপেরে খুবই গর্ব অনুভব করছি যে আপনাদের সকলের চোখের সামনেই ঘটে গেছে এই বিশেষ ঘটনা। গতআড়াই বছরে ভারতের সম্ভাবনাকে বাস্তবে প্রতিফলিত করতে এবং দেশের অর্থনীতিকে সঠিকপথে চালিত করতে নিরলস পরিশ্রম করে গেছি আমরা। ভারতহল বর্তমানে বিশ্বের দ্রুত বিকাশশীল এক বৃহত্তম অর্থনীতি। বাণিজ্যিককাজকর্মের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা এবং বিনিয়োগ আকর্ষণ করার মতো বিষয়গুলিকে আমিসর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকি। কারণ, তার মূল লক্ষ্য হল দেশের যুবশক্তির জন্যসুযোগ-সুবিধা সৃষ্টি। এই শক্তিকে অবলম্বন করে কয়েকটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপেরবাস্তবায়নের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি আমরা। এরই অন্যতম হল পণ্য ও পরিষেবা কর। দেউলিয়াবিধি, জাতীয় কোম্পানি আইন ট্রাইব্যুনাল, একটি নতুন সালিশি প্রচেষ্টার কাঠামো এবং একনতুন আইপিআর ব্যবস্থা আমরা গড়ে তুলছি। বাণিজ্যিককাজকর্ম সম্পর্কে বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রতিবেদন অনুযায়ী ভারত এখন উন্নতি করেছে যথেষ্টমাত্রায়। আঙ্কটাডপ্রকাশিত বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন, ২০১৬ অনুযায়ী, ২০১৬-১৮ পর্যন্ত সম্ভাবনাময়অর্থনীতিগুলির মধ্যে ভারত দখল করে নিয়েছে তৃতীয় স্থানটি। বিশ্বপ্রতিযোগিতামুখিনতা সম্পর্কিত প্রতিবেদন ২০১৫-১৬ এবং ২০১৬-১৭ অনুযায়ী ভারত অতিক্রমকরে এসেছে আরও ৩২টি স্থান। ডব্ল্যুআইপিও এবং অন্যান্য সংস্থা প্রকাশিত বিশ্বউদ্ভাবন সূচক, ২০১৬ অনুযায়ী ১৬টি স্থান অতিক্রম করে এসেছি আমরা। বিশ্বব্যাঙ্কের সার্বিক ফলাফল সূচক, ২০১৬ অনুসারে আমরা এখন অতিক্রম করে এসেছি আরও ১৯টিসোপান। আপনারালক্ষ্য করেছেন যে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থা ও পদ্ধতিগুলিকে আন্তরিকভাবেই গ্রহণকরেছি আমরা এবং সেই লক্ষ্যেই আমরা আরও এগিয়ে চলেছি। প্রায় প্রত্যেকটি দিনই আমরাআরও বেশি করে সংহতি ও সমন্বয়ের চেষ্টা করছি সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে। আমাদের নীতি ওপদ্ধতির ইতিবাচক ফল এক গভীর আত্মবিশ্বাসের জন্ম দিয়েছে আমাদের মধ্যে। শুধু তাই নয়,বাণিজ্যিক কাজকর্মের পক্ষে সহজতম স্থান হিসেবে প্রক্রিয়াগত ব্যবস্থাকে আরও সরল করেতোলার কাজে তা বিশেষভাবে উৎসাহ যুগিয়েছে আমাদের। বিভিন্নক্ষেত্রে নানাভাবে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকে আমরা আরও উদার করে তুলেছি। ভারত হলবর্তমানে বিশ্বের সর্বাপেক্ষা মুক্ত অর্থনীতির দেশ। পরিবেশগতএই পরিবর্তন স্বীকৃতি লাভ করেছে দেশ-বিদেশের বিনিয়োগকারীদের কাছে। স্টার্ট আপস্থাপনের এক অনুকূল পরিবেশ বর্তমানে গড়ে উঠেছে এই দেশটিতে। বিশেষ উৎসাহের সঙ্গেউন্মেষ ঘটছে দেশের যুবশক্তির কর্মপ্রচেষ্টার। গতআড়াই বছরে দেশের মোট প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের মাত্রা স্পর্শ করেছে ১৩০ বিলিয়নমার্কিন ডলার। গত দুটি আর্থিক বছরে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ খাতে ইক্যুইটিরক্ষেত্রে পূর্ববর্তী দুটি বছরের তুলনায় বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৬০ শতাংশ বেশি। গতবছর প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। আবার, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের দিক দিয়ে বিশ্বের শীর্ষ ১০টি রাষ্ট্রেরমধ্যে নিজের স্থান করে নিয়েছে আমাদের দেশ। বিনিয়োগের ওপর রিটার্ন লাভের ক্ষেত্রে ভারত অনেক পেছনে ফেলে দিয়েছেবিভিন্ন দেশকে। বেসলাইন লভ্যাংশ সূচক অনুযায়ী ২০১৫ সালে ভারত রয়েছে প্রথম স্থানে। ‘মেকইন ইন্ডিয়া’ হল বর্তমানে ভারতের এক বৃহত্তম ব্র্যান্ড। এর সুবাদে উৎপাদন, নকশা তৈরিএবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে এক আন্তর্জাতিক কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ভারত। এমনএক ভারত গড়ে তুলতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ যেখানে থাকবে : · উন্নততর কর্মসংস্থানের সুযোগ; · উন্নততর জীবনযাপনের সুযোগ এবং · জীবনযাত্রার মানের ক্রমবিকাশ। পণ্য মাশুল করিডর, শিল্প করিডর, উচ্চগতির পরিবহণব্যবস্থা, মেট্রো রেল প্রকল্প, স্মার্ট নগরী, উপকূল অঞ্চল, আঞ্চলিক বিমানবন্দর,জল, স্বাস্থ্য ব্যবস্থা এবং জ্বালানি প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে আমাদের এই যাত্রাঅব্যাহত থাকবে। মাথাপিছু বিদ্যুতের যোগান ও ব্যবহারকেও আমরা আরও উন্নত করে তুলতেচাই। এই কাজ চালিয়ে যাওয়ার পাশাপাশি পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন সম্ভব করেতুলতেও আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। সড়কনির্মাণ এবং নতুন নতুন রেলপথ সম্প্রসারণের জন্য শিলান্যাসের লক্ষ্যমাত্রা বৃদ্ধিপেয়ে চলেছে বহুগুণে। বিনিয়োগকারীদের কাছে আমাদের এই প্রচেষ্টা এক নজিরবিহীন সুযোগএনে দিয়েছে। · হার্ডওয়্যার থেকে সফটওয়্যার; · প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা থেকে সাইবার নিরাপত্তা এবং · ওষুধ উৎপাদন থেকে পর্যটন। আমিবিশেষ দৃঢ়তার সঙ্গেই ঘোষণা করতে চাই যে ভারত একা যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা এনে দিয়েছেবিশ্বের কাছে, সমগ্র মহাদেশে তার তুলনা মেলা ভার। অটল উদ্ভাবন মিশন-এর আওতায় বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণের বিষয়টি দেখভাল করবে নীতি আয়োগের এ আই এম দপ্তরটি। মিশনের ডিরেক্টর সহ অন্যান্য কর্মীদের নিয়োগ করবে নীতি আয়োগ। মিশনের সদর দপ্তর স্থাপিত হবে নয়াদিল্লিতে। নিম্নলিখিত বক্তব্যটি মালদ্বীপ সফরের আগে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি – “আমাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধু প্রতিবেশী দেশ মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি পদে সম্মানীয় ইব্রাহিম মহম্মদ সোলির ঐতিহাসিক শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে মালদ্বীপের রাজধানী মালে সফর উপলক্ষে আমি আনন্দিত। আমি তাঁর সাম্প্রতিক জয়ের জন্য রাষ্ট্রপতি পদে নির্বাচিত সোলিকে উষ্ণ অভিনন্দন জানাই। এই জয় গণতন্ত্র, আইনের শাসন ও উন্নত ভবিষ্যতের লক্ষ্যে মালদ্বীপবাসীর সামগ্রিক চাহিদার প্রতিফলন। আমার সরকারের লক্ষ্য – সামগ্রিক উন্নয়ন, ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’, আমাদের সব প্রতিবেশীদের জন্যও প্রযোজ্য। আমরা ভারতবাসী শান্তিপূর্ণ ও উন্নত মালদ্বীপ চাই। আমি উন্নয়নকে প্রধান্য দিয়ে, বিশেষ করে পরিকাঠামো, স্বাস্থ্য পরিষেবা, যোগাযোগ ও জনসংযোগের ওপর আমার সরকার ঘনিষ্ঠভাবে মালদ্বীপ সরকারের সঙ্গে কাজ করতে চায়, সে বিষয়টি শ্রী সোলির নেতৃত্বাধীন মালদ্বীপ সরকারের কাছে জানাবো। পুণ্যার্থীও পর্যটকদের জন্য উজ্জয়িনী সিংহস্থ-এ যে ব্যাপক ব্যবস্থা গ্রহণকরা হয়েছে তার বিশেষ প্রশংসা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ট্যুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শিবরাজ সিং চৌহানের সঙ্গে কথাবার্তা বলে খুব আনন্দ পেলাম। সিংহস্থ-এ যে ব্যাপক ব্যবস্থার আয়োজন করা হয়েছে সে সম্পর্কে তিনি আমাকে বিস্তারিতভাবে জানিয়েছেন। সিংহস্থ-এ প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে জেনেও আমি আনন্দিত। সেখানে স্থলে ও জলে পরিচ্ছন্নতা রক্ষার জন্য যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তা প্রশংসার দাবি রাখে। এর মধ্যে জম্মু ও কাশ্মিরে ৫, ছত্তিশগড়ে ৪, ঝাড়খন্ডে ৩, ওড়িশায় ৩ এবং মহারাষ্ট্রে ২ বাহিনি নিয়োজিত করা হবে। এটা অর্জনের জন্য যদি প্রয়োজন হয়, তা’হলে বয়স ও শিক্ষাগত যোগ্যতার ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হবে। জম্মু ও কাশ্মিরে যে ৫ বাহিনি গঠন করা হবে তাতে কনস্টেবল ও চতুর্থ শ্রেণির পদের জন্য জম্মু ও কাশ্মিরের সীমান্ত জেলাগুলি থেকে ৬০% শূণ্যপদ পূরণ করা হবে। এল ডব্লু ই কবলিত রাজ্যগুলির জন্য ‘নিরাপত্তা সম্পর্কিত ব্যয়’ (এস আর ই) প্রকল্পের আওতায় ২৭টি মূল জেলা থেকে কন্স্টেবল পদের জন্য ৭৫% শূণ্যপদ পূরণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিজয় দিবসউপলক্ষে ১৯৭১-এর যুদ্ধের সেনানীদের অভিবাদন জানালেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন,“বিজয় দিবসে আমরা ১৯৭১-এর যুদ্ধে যাঁরা লড়েছিলেন এবং দেশকে রক্ষা করেছিলেন কঠোরশ্রমে, সেই সকল সেনানীদের অদম্য সাহস’কে অভিবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল লাক্ষাদ্বীপ, তামিলনাডু ও কেরলসফর করবেন। ‘ওখি’ ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতেই তাঁর এই সফরসূচি।কাভারত্তি, কন্যাকুমারী এবং তিরুবনন্তপুরম-এ ত্রাণের পরিস্থিতিও তিনি খতিয়েদেখবেন। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী আলোচনা ও মতবিনিময়ে মিলিত হবেন সরকারি আধিকারিক এবংজনপ্রতিনিধিদের সঙ্গে। কৃষক ও মৎস্যজীবী সহ অন্যান্য যাঁরা ঘূর্ণিঝড়ের শিকারহয়েছেন, তাঁদের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কিত প্রথম পূর্বাভাষটি ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তরের পক্ষ থেকেপ্রচার করা হয় ২৯ নভেম্বর তারিখে। ঐ দিনই সম্ভাব্য ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কে কেরলেরমুখ্যসচিবের কাছে এক সতর্কবার্তা পাঠায় কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। সংশ্লিষ্টকেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে তৎক্ষণাৎ কাজে নেমে পড়তে নির্দেশ দেওয়া হয়। প্রতিনিয়ত নজররাখা হয় উদ্ধার ও ত্রাণকার্যের ওপর। কেরলের ৬৬টি এবং তামিলনাডুর ২টি নৌকায় ৮০০ জন মৎস্যজীবী নিরাপদেঅবতরণ করেন মহারাষ্ট্রের সিন্ধুদুর্গের দেবগড় বন্দরে। পরে তাঁরা নিজের নিজেরজায়গায় ফিরে গেছেন। পরমশ্রদ্ধেয় মোরারী বাপুজি, বিবেকানন্দ কেন্দ্রের অধ্যক্ষ শ্রী পি পরমেশ্বরনজি, আমারমন্ত্রিসভার সদস্য পন রাধাকৃষ্ণনজি, বিবেকানন্দ আশ্রমের স্বামীজি, চিত্তানন্দজি,বালাকৃষ্ণজি, ভানুদাসজি, বিবেকানন্দ কেন্দ্রের সহ-অধ্যক্ষ নিবেদিতাজি এবং আমারপ্রিয় বন্ধুগণ! আপনাদের অত্যন্ত আপনজন। ১২জানুয়ারি কোন সাধারণ দিন নয়। আমি পরমপুজনীয় স্বামী বিবেকানন্দকে আমার অন্তরের শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করি। এই মহাপুরুষ তাঁরশক্তিশালী দর্শনের মাধ্যমে আজও অনেক মানুষের মনকে সঠিক পথে পরিচালিত করতে সক্ষম। “আমার কাছে আধ্যাত্মিকতা হলঈশ্বর এবং পরমাত্মার মধ্যে যোগসূত্র। আফগানিস্হানের রাষ্ট্রপতি ডঃ মহম্মদ আসরাফ গানি গত ১৯ সেপ্টেম্বর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে ভারত সফরে আসেন। দুই নেতা ভারত-আফগানিস্হান বহুমুখী কৌশলগত অংশীদারিত্বের অগ্রগতি ইতিবাচকভাবে মূল্যায়ণ ও পর্যালোচনা করেন। ভারত- আফগানিস্হান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০০ কোটি মার্কিন ডলার অতিক্রম করায় দুজনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। রাষ্ট্রপতি ঘানি আফগানিস্হানে শান্তি ও সম্প্রীতির পরিকল্পনা বজায় রাখতে এবং সন্ত্রাস ও চরমপন্হা দমনের জন্য তাঁর সরকার কি কি উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তা প্রধানমন্ত্রীকে জানান। প্রধানমন্ত্রী আবারও উল্লেখ করেন যে ভারত একটি আফগান-নেতৃত্বাধীন, আফগানচালিত ও আফগান নিয়ন্ত্রিত শান্তি ও পুর্নমিলনের প্রক্রিয়াকে সমর্থন করবে, যা আফগানিস্হানকে একটি ঐক্যবদ্ধ, শান্তিময়, সর্বজনবিদিত ও গণতান্ত্রিক দেশ হতে এবং একটি অর্থনৈতিকভাবে স্বচ্ছল দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করতে সাহায্য করবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ঐ জমিটি ১৯ কোটি ৮০ লক্ষ টাকায় বিক্রির অনুমতি দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও ক্রোয়েশিয়ার মধ্যে পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে ২৬শে মার্চ স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্র বা মউটিতে কর্মপরবর্তী অনুমোদন মিলেছে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে পর্যটন ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সহজ হবে। বিভিন্ন কল্যাণমূলক কর্মসূচির আওতায় ভর্তুকি সহায়তা সরাসরি গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে জমা পড়ার ক্ষেত্রে অর্জিত সাফল্য ও অগ্রগতির বিষয়টি সোমবার এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে পর্যালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই ব্যবস্থায় ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ৩০ কোটি গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে মোট ৬১ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছে। এর মধ্যে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চিতকরণ কর্মসূচিতে ২৫ হাজার কোটি টাকা এবং রান্নার গ্যাসে ভর্তুকিদান সম্পর্কিত ‘পহল’ কর্মসূচির আওতায় ২১ হাজার কোটি টাকা জমা পড়েছে। চিহ্নিত ও প্রকৃত গ্রাহকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে বিভিন্ন কর্মসূচির সুফল পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে বেশ কয়েকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল প্রশাসন। প্রকৃত গ্রাহকদের কাছে যাতে সঠিক সময়ে ভর্তুকি সহায়তার অর্থ পৌঁছে দেওয়া যায়, তা নিশ্চিত করতে ত্রুটিমুক্ত একটি বিশেষ মঞ্চ প্রস্তুত করার ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। একইসঙ্গে, তিনি সংশ্লিষ্ট সকল দপ্তরকে এই মর্মে নির্দেশ দিয়েছেন যে, নতুন ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে প্রকৃত গ্রাহকরা যাতে কোনওভাবেই হয়রানি বা অসুবিধার শিকার না হয়ে পড়েন, তা নিশ্চিত করতে হবে। নতুন ব্যবস্থা পুরোপুরিভাবে চালু করার আগে তা ঠিক মতো কাজ করছে কি না তা খতিয়ে দেখার পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী সংশ্লিষ্ট কর্তাব্যক্তিদের। বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থাগুলিকে সঠিকভাবে চিহ্নিত করার কাজে যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে সে সম্পর্কেও এদিনের বৈঠকে অবহিত করা হয় শ্রী মোদীকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কৌশলগত পারমাণবিক আক্রমণে সক্ষম ডুবো জাহাজ আইএনএস আরিহন্তের সদস্যদের অভ্যর্থনা জানান। আইএনএস আরিহান্তের সাফল্য এবং এই ধরণের ডুবো জাহাজের নক্‌শা তৈরি, নির্মাণ এবং তা চালানোর দক্ষতা অর্জন করে বিশ্বের এই ধরণের ক্ষমতাসম্পন্ন স্বল্প কয়েকটি দেশের তালিকায় ভারতকে জায়গা দেবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এই ডুবো জাহাজের সব সদস্যদের অভিনন্দন জানান এবং এটি নির্মাণ কাজের সঙ্গে জড়িত অন্যান্যদেরও অভিনন্দিত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের জনগণ নতুন ভারত ও শক্তিমান ভারত গড়ার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। এই পথে এগিয়ে যেতে সব ধরণের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় নিরলস কাজ করেছেন তাঁরা। তিনি জোড় দিয়ে বলেন, মজবুত ভারত কোটি কোটি ভারতবাসীর সব আশা-আকাঙ্খা পূরণে সক্ষম হবে এবং আন্তর্জাতিক স্তরে শান্তি ও সুস্থিতি বজায় রাখার লক্ষ্যে এক শক্তিশালী ভিত্তি হিসাবে কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এই অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী সকলকে ও তাঁদের পরিবার-পরিজনদের আলোর উৎসব দীপাবলীর শুভেচ্ছা জানান। তিনি আশা প্রকাশ করেন, আলো যেমন অন্ধকারকে দূর করে সব ভয়ের অবসান ঘটায় আইএনএস আরিহন্ত এমনভাবেই সব ভয়ভীতি কাটিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাবে। দায়িত্বশীল দেশ হিসাবে ভারত পারমাণবিক শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রিত কাঠামোর মধ্যে থেকে কার্যকরি নিরাপত্তা পদক্ষেপ গ্রহণ করে এবং সব রাজনৈতিক নিয়ন্ত্রণ মেনে কাজ করে চলেছে। মিঃলিয়াং ওয়েঙ্গেনের নেতৃত্বে’স্যানি’ গোষ্ঠীএবং চিনের বাণিজ্যিক প্রতিনিধিদলগতকাল প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎকরে। ভারতের বিভিন্ন ক্ষেত্রেবিনিয়োগের ইচ্ছা প্রকাশ করেপ্রতিনিধিদল। মউস্বাক্ষরের ফলে ভারত ও আর্মেনিয়ার মধ্যে বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে যেমনসহযোগিতার প্রসার ঘটবে, অন্যদিকে তেমনই বিপর্যয়ের মুহূর্তে দুটি দেশের জনসাধারণেরইকল্যাণ, সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বিপর্যয় মোকাবিলা ক্ষেত্রেপারস্পরিক স্বার্থে প্রাসঙ্গিক তথ্যেরও আদানপ্রদান ঘটবে এই দুটি দেশের মধ্যে। প্রতিরক্ষা ও রণকৌশল জাপান নৌ-বাহিনী এবং ভারতীয় নৌ-বাহিনীর মধ্যে সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করার জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ জাপান নৌ-বাহিনী এবং ভারতীয় নৌ-বাহিনীর মধ্যে সামুদ্রিক বিষয়ে আরও বেশি সহযোগিতা গড়ে তোলা এবং তথ্যের আদানপ্রদান ডিজিটাল এবং নতুন প্রযুক্তি জাপান-ভারত ডিজিটাল অংশীদারিত্ব ক্ষেত্রে ভারতের ইলেক্ট্রনিক্স ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রক এবং সে দেশের অর্থনীতি, বাণিজ্য তথা শিল্প মন্ত্রকের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতাপত্র কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং ইন্টারনেট অফ থিংস সহ পরবর্তী প্রজন্মের প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে জাপানের “সোসাইটি ৫.০” এবং ভারতের “ডিজিটাল ইন্ডিয়া”, “স্মার্ট সিটি” এবং “স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া”র মতো ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচিগুলির মধ্যে সহযোগিতা তৈরির সুযোগ-সুবিধাগুলিকে খুঁজে বের করে তা কার্যকর করা কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ক্ষেত্রে ভারতের নীতি আয়োগ এবং জাপানের অর্থনীতি, বাণিজ্য তথা শিল্প মন্ত্রকের মধ্যে আগ্রহ প্রকাশ কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা সংক্রান্ত প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা বাড়ানো এবং এতে উৎসাহদান স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও রোগীকল্যাণ স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও রোগীকল্যাণ ক্ষেত্রে ভারতের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ বিষয়ক মন্ত্রক এবং জাপান সরকারের কেন্দ্রীয় সচিবালয়ের স্বাস্থ্য পরিচর্যা বিষয়ক নীতি কার্যালয়ের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতাপত্র ভারত ও জাপানের মধ্যে প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা, সংক্রামক নয়, এমন অসুখ-বিসুখ প্রতিরোধ, মাতৃত্বকালীন ও শিশুস্বাস্থ্য পরিষেবা, সার্বিক স্বাস্থ্যবিধান, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, পুষ্টি তথা বয়স্কদের পরিচর্যার মতো সম্ভাবনাময় সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করতে ব্যবস্থা গ্রহণ করা স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও রোগীকল্যাণ ক্ষেত্রে ভারতের আয়ুষ মন্ত্রক এবং জাপানের কানাগাওয়া প্রিফেকচারাল প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতাপত্র খাদ্য নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা ও গুণমান কর্তৃপক্ষ (এফএসএসএআই) এবং জাপানের খাদ্য নিরাপত্তা কমিশন, সে দেশের গ্রাহক বিষয়ক এজেন্সি এবং জাপানের স্বাস্থ্য, শ্রম ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের মধ্যে সমঝোতাপত্র খাদ্য নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ভারত ও জাপানের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির মধ্যে আরও সহযোগিতা গড়ে তোলা কৃষিক্ষেত্র এবং সুসংহত উৎপাদন ও বিপণন খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পক্ষেত্রে ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও শিল্প এবং জাপানের কৃষি, অরণ্য ও মৎস্যচাষ বিষয়ক মন্ত্রকের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতাপত্র স্থানীয় প্রশাসন, বেসরকারি সংস্থা প্রভৃতির মতো সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে সামিল করে ভারতের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের মানোন্নয়ন কৃষি ও মৎস্যচাষ ক্ষেত্রে ভারতে জাপানি বিনিয়োগ বাড়াতে ভারতের কৃষি ও কৃষককল্যাণ মন্ত্রক এবং জাপানের কৃষি, অরণ্য ও মৎস্যচাষ মন্ত্রকের মধ্যে কর্মসূচি গ্রহণ ভারতে জাপানি সংস্থাগুলির বিনিয়োগের জন্য অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তুলে দেশে কৃষি উৎপাদন ও বিপণন তথা মৎস্যচাষ ক্ষেত্রের উন্নয়নে প্রসার ঘটানো মহারাষ্ট্র সরকার এবং জাপানের কৃষি, অরণ্য ও মৎস্যচাষ বিষয়ক মন্ত্রকের মধ্যে মহারাষ্ট্রে সুসংহত কৃষি উৎপাদন ও তার বিপণনের প্রসারে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতাপত্র মহারাষ্ট্রে সুসংহত কৃষি উৎপাদন ও তার বিপণনের প্রসারে জাপানি সংস্থাগুলির বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা প্রদান উত্তরপ্রদেশে সুসংহত কৃষি উৎপাদন ও তার বিপণনের প্রসারের লক্ষ্যে উত্তরপ্রদেশ সরকার এবং জাপানের কৃষি, অরণ্য ও মৎস্যচাষ বিষয়ক মন্ত্রকের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতাপত্র উত্তরপ্রদেশে সুসংহত কৃষি উৎপাদন ও তার বিপণনের প্রসারে জাপানি সংস্থাগুলির বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা প্রদান ভারতের এক্সপোর্ট ক্রেডিট গ্যারান্টি কর্পোরেশন এবং জাপানের নেক্সি সংস্থার মধ্যে সমঝোতাপত্র ভারত ও জাপানের মধ্যে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৃদ্ধিতে উৎসাহিত করা, সেইসঙ্গে অন্যান্য দেশে বিভিন্ন প্রকল্পের রূপায়ণে উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতাকে আরও সুদৃঢ় করা ডাক পরিষেবা ক্ষেত্রে ভারতের যোগাযোগ মন্ত্রক এবং জাপানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক তথা যোগাযোগ মন্ত্রকের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ক সমঝোতা ভারতের যোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রক এবং জাপানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক তথা যোগাযোগ মন্ত্রকের মধ্যে ডাক পরিষেবা বিষয়ক আলাপ-আলোচনা শুরু করার মধ্য দিয়ে ডাক পরিষেবা ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে আরও মজবুত করা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, শিক্ষা বিষয়ক আদানপ্রদান এবং পরিবেশ গবেষণামূলক অংশীদারিত্বের জন্য ভারতের বিজ্ঞান ও শিল্প গবেষণা পর্ষদ (সিএসআইআর) এবং জাপানের হিরোসিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতাপত্র দুই দেশের এই প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে ইলেক্ট্রনিক্স, সেন্সর, হাইস্পিড ভিশন, রোবোটিক্স সহ মেকাট্রনিক্স এনভায়রনমেন্টাল রিসার্চ, ইন্টেলিজেন্ট ট্রান্সপোর্টেশন প্রভৃতির মতো অ্যাডভান্সড ম্যানুফ্যাকচারিং ক্ষেত্রে গবেষণামূলক অংশীদারিত্ব বৃদ্ধি করা সহযোগিতামূলক গবেষণার জন্য ভারতের সিএসআইআর এবং জাপানের টোকিও বিশ্ববিদ্যালয়ের রিসার্চ সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলজির মধ্যে সমঝোতাপত্র রোবোটিক্স / ইন্টারনেট অফ থিংস, অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়াল্‌স সহ পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ও বৈদ্যুতিন ক্ষেত্রে গবেষণামূলক অংশীদারিত্ব বাড়ানো শিল্পক্ষেত্রে গবেষণামূলক কাজকর্মের বিষয়ে পারস্পরিক ক্ষেত্রে যৌথ গবেষণা পরিচালনার জন্য ভারতের সিএসআইআর এবং জাপানের টোকিও ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজির ইনস্টিটিউট অফ ইনোভেটিভ রিসার্চের মধ্যে সহযোগিতামূলক সমঝোতা ভারতের সিএসআইআর এবং জাপানের টোকিও ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজির ইনস্টিটিউট অফ ইনোভেটিভ রিসার্চের মধ্যে অ্যাডভান্সড ম্যাটেরিয়াল্‌স, জৈব বিজ্ঞান এবং তথ্যপ্রযুক্তির মতো ক্ষেত্রে গবেষণামূলক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলা ডাক পরিষেবা ক্ষেত্রে ভারতের যোগাযোগ বিষয়ক মন্ত্রক এবং জাপানের অভ্যন্তরীণ বিষয়ক তথা যোগাযোগ মন্ত্রকের মধ্যে সহযোগিতামূলক সমঝোতা পরিবেশগত সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারত ও জাপানের মধ্যে সহযোগিতামূলক সমঝোতা পরিবেশের সুরক্ষা ও উন্নয়নের জন্য ভারত-জাপান সহযোগিতাকে আরও প্রসারিত করা শিক্ষা ও গবেষণামূলক আদানপ্রদানের জন্য ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাসিউটিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (নাইপার) এবং জাপানের শিজিওকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতাপত্র ভারতের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ফার্মাসিউটিক্যাল এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ (নাইপার) এবং জাপানের শিজিওকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষামূলক যোগসূত্র বৃদ্ধি নাগাসাকি বিশ্ববিদ্যালয় এবং ভারতের কাঞ্চিপুরমস্থিত আইআইআইটিডিএম প্রতিষ্ঠানের মধ্যে ইন্দো-জাপান গ্লোবাল স্টার্ট-আপ ক্ষেত্রে আরও সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র ইন্দো-জাপান গ্লোবাল স্টার্ট-আপ উদ্যোগের পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি এবং মানবসম্পদের উন্নয়ন হায়দরাবাদের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি এবং জাপানের হিরোসিমা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে শিক্ষাকর্মী ও শিক্ষামূলক আদানপ্রদানের জন্য সমঝোতাপত্র উভয় দেশের এই দুই প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যৌথ গবেষণামূলক কাজকর্ম বাড়ানোর পাশাপাশি শিক্ষাকর্মী ও শিক্ষামূলক আদানপ্রদান বৃদ্ধি করা হায়দরাবাদের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি এবং জাপানের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ অ্যাডভান্সড ইন্ডাস্ট্রিয়াল সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলজির মধ্যে সমঝোতাপত্র কানপুরের ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ টেকনলজি এবং হোক্কাইডো বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষাকর্মী, গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ ইঞ্জিনিয়ারিং, গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ ইনফরমেশন সায়েন্স অ্যান্ড টেকনলজি, গ্র্যাজুয়েট স্কুল অফ কেমিকেল সায়েন্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং-এর মধ্যে শিক্ষামূলক আদানপ্রদানের চুক্তি / সমঝোতাপত্র শিক্ষামূলক আদানপ্রদান এবং ক্রীড়া সহযোগিতার জন্য ভারতের স্পোর্টস অথরিটি অফ ইন্ডিয়া (সাই) এবং জাপানের সুকুবা বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে সমঝোতাপত্র যৌথ কর্মসূচি গ্রহণের মাধ্যমে ক্রীড়াক্ষেত্রের মানোন্নয়ন ও উৎকর্ষসাধনের লক্ষ্যে সহযোগিতাকে আরও সুদৃঢ় করা ঋণচুক্তির জন্য নথিপত্র বিনিময় দ্বিতীয় পর্যায়ের মুম্বাই-আমেদাবাদ উচ্চগতিসম্পন্ন রেল নেটওয়ার্ক নির্মাণ প্রকল্প তৃতীয় পর্যায়ের উমিয়াম-উমত্রু জলবিদ্যুৎ উৎপাদন কেন্দ্রের সংস্কার ও আধুনিকীকরণ প্রকল্প তৃতীয় পর্যায়ে দিল্লীতে দ্রুতগতিসম্পন্ন গণ-পরিবহণ প্রকল্প তৃতীয় পর্যায়ের উত্তর-পূর্ব সড়ক নেটওয়ার্ক যোগাযোগ উন্নয়ন প্রকল্প ত্রিপুরায় সুষ্ঠু বন পরিচালনা ও সংরক্ষণ সংক্রান্ত প্রকল্প গভর্নমেন্ট টু বিজনেস / বিজনেস টু বিজনেস চুক্তি জাপানের কাগোমি কোম্পানি লিমিটেড এবং ভারত সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প মন্ত্রকের মধ্যে সমঝোতাপত্র ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক, ভারতীয় স্টেট ব্যাঙ্ক পেমেন্টস সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেড এবং হিটাচি পেমেন্টস সার্ভিসেস প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে যৌথ উদ্যোগ গড়ে তোলার লক্ষ্যে চুক্তি জাপানের নিশান স্টিল ইন্ডাস্ট্রি কোম্পানি লিমিটেড এবং ভারত সরকারের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প মন্ত্রকের মধ্যে সমঝোতাপত্র ভারতে ৫৭টি জাপানি সংস্থার বেসরকারি ক্ষেত্রে বিনিয়োগ প্রকল্পের প্রস্তাব এবং জাপানে ১৫টি ভারতীয় সংস্থার বিনিয়োগ প্রস্তাবে আগ্রহ প্রকাশের বিষয়টিকে উভয় দেশের সরকারই সমর্থন জানিয়েছে এতে ২০০টি জেনারেল ওয়ার্ড বেড থাকবে। একই অনুষ্ঠানে, প্রধানমন্ত্রী সফদরজং হাসপাতালে ৫৫৫টি বেডের একটি অতি বিশেষ ব্লকেরও উদ্বোধন করলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত চার বছরে ভারতে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় নতুন দিগন্ত খুলে গিয়েছে। সঠিক প্রকল্পের মাধ্যমে শক্তিশালী রাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ হল এই বাজেট। মধ্যবিত্ত থেকে শুরু করে শ্রমিক পর্যন্ত, কৃষকদের উন্নতি থেকে শুরু করে ব্যবসায়ীদের উন্নতি পর্যন্ত, আয়কর ছাড় থেকে শুরু করে পরিকাঠামো উন্নয়ন পর্যন্ত, নির্মাণ শিল্প থেকে শুরু করে ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পক্ষেত্র পর্যন্ত, গৃহ নির্মাণ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য পরিষেবা পর্যন্ত, অর্থনীতিকে নতুন গতি প্রদান থেকে শুরু করে ‘নতুন ভারত’ নির্মাণ পর্যন্ত এই বাজেটের প্রতিটি দিকের ওপর লক্ষ্য রাখা হয়েছে। বন্ধুগণ, আমাদের সরকারি প্রকল্পগুলি দেশের প্রত্যেক মানুষের জীবনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের মাধ্যমে ৫০ কোটি গরিবের চিকিৎসা সুনিশ্চিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি যোজনা এবং সুরক্ষা বিমা যোজনা দ্বারা ২১ কোটি গরিব মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। স্বচ্ছ ভারত মিশনের মাধ্যমে ৯ কোটিরও বেশি পরিবার উপকৃত হয়েছেন। এবার এই বাজেটে ১২ কোটিরও বেশি কৃষক এবং ৩ কোটিরও বেশি মধ্যবিত্ত করদাতা পরিবার এবং ৩০-৪০ কোটি শ্রমিক সরাসরি উপকৃত হবেন। এই বিশাল সংখ্যাক মানুষ আজ নিজেদের স্বপ্ন সফল করার পাশাপাশি দেশের উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করছেন। এহেন সময়ে এই ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্ত সমাজের আশা-আকাঙ্ক্ষা, কোন কিছুর করে দেখানোর উদ্দীপনাকে সমর্থন জানাতে সরকার নিজের দায়বদ্ধতা প্রদর্শন করেছে। আমাদের সরকার এবার এই দাবি পূরণ করেছে। বন্ধুগণ, কৃষকদের জন্য আমাদের পূর্ববর্তী বিভিন্ন সরকার বিভিন্ন প্রকল্প গড়েছে। কিন্তু সেগুলির মাধ্যমে ২-৩ কোটি সম্পন্ন কৃষকই লাভবান হয়েছে। আমরা যে ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’ বা ‘পিএম-কিষাণ’ যোজনা চালু করেছি, তার মাধ্যমে ৫ একর বা তার থেকে কম আয়তনের জমির মালিক ১২ কোটিরও বেশি কৃষক লাভবান হবেন। বলা যায় যে এটি দেশ স্বাধীন হওয়ার পর থেকে কৃষকদের জন্য সর্ববৃহৎ প্রকল্প। আমাদের সরকার কৃষকদের জন্য একের পর এক কার্যকরী পদক্ষেপ নিচ্ছে। এবারের বাজেটে পশুপালন, গো-পালন ও মৎস্যচাষের মতো গ্রামীণ জীবন ও কৃষি সংক্রান্ত সকল বিষয়ের দিকে বিশেষ লক্ষ্য রাখা হয়েছে। রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগ এবং সরকারের মৎস্যচাষ বিভাগ কোটি কোটি কৃষকের আয়ের পরিধি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সহায়ক হবে। এভাবে কৃষক ও মৎস্যজীবীদের ক্ষমতায়নের মাধ্যমে তাঁদের আয় দ্বিগুণ করতে পারবে। আজকের এই সিদ্ধান্ত এই মিশনকে দ্রুতগতিতে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহায়ক হবে। বন্ধুগণ, আজ ভারতে অনেক ক্ষেত্রে উন্নয়ন হচ্ছে। তাঁদের কল্যাণে আমরা ‘প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী মানধন যোজনা’, তাঁদের ৬০ বছর বয়সের পর জীবনের জন্য অনেক বড় সম্বল হবে। ভাই ও বোনেরা, আমাদের সরকার দেশের তেমন প্রত্যেক অংশের নাগরিকদের উন্নয়নের মুখ্য ধারার সঙ্গে যুক্ত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। সমাজের শেষ পংক্তিতে দাঁড়িয়ে থাকা ব্যক্তিটি পর্যন্ত পৌঁছতে সরকার মাদারি, সাঁপুড়ে, বাঞ্জারা, গাড়িয়া-লোহারদের মতো যাযাবর মানুষদের কল্যাণে একটি ওয়েলফেয়ার বোর্ড গড়ে তোলারও সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ব্যবসায়ী ও তাঁদের কর্মচারীদের প্রয়োজন বুঝে তাঁদের সমস্যা সমাধানের জন্য ডিআইপিপি-কে পুনর্গঠন করে তাকে বিশেষ দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে। এখন এই বিভাগ ‘ডিপার্টমেন্ট ফর প্রোমোশন অফ ইন্ডাস্ট্রিজ অ্যান্ড ইন্টারনাল ট্রেড’ নামে পরিচিত হবে। আমি আনন্দিত যে আগামী দশকের শেষ পর্যন্ত সময়ের প্রয়োজনীয়তা ও লক্ষ্যগুলি মাথায় রেখে এই বাজেটের প্রকল্পগুলিকে রচনা করা হয়েছে। এই বাজেট ‘নতুন ভারত’-এর লক্ষ্যপ্রাপ্তির ক্ষেত্রে দেশের ১৩০ কোটি মানুষকে নতুন করে প্রাণশক্তি যোগাবে। তবে, ঐ জমি লিজ মুক্ত করার একটি অন্যতম শর্ত হল এই যে, শুধুমাত্র গবাদি পশুর খাদ্য উৎপাদন ও মজুতের একটি ক্ষেত্র হিসেবেই ঐ জমি ব্যবহার করা হবে – এই মর্মে পাঞ্জাব সরকারকে চুক্তিবদ্ধ হতে হবে। উল্লেখ্য, একটি অত্যাধুনিক গবাদি পশুপালন ক্ষেত্র গড়ে তোলার জন্য ইতিমধ্যেই বরাত দিয়েছে পাঞ্জাব সরকার এবং তা গড়ে তোলার কাজও চলছে পুরোদমে। এখনও পর্যন্ত মাত্র ৩০০টি গবাদি পশু পালন ও গো-খাদ্য উৎপাদনে উপযোগী জমি রয়েছে ঐ ক্ষেত্রটির। এই কারণেই সি.আই.আর.বি.’কে লিজ দেওয়া জমি ফেরত চেয়েছিল পাঞ্জাব সরকার। “গুরু রবিদাসের জন্ম জয়ন্তীতে আমি তাঁকে প্রণাম জানাই। যে মহান সন্তপুরুষরাআমাদের দেশে জন্মগ্রহণ করেছিলেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন গুরু রবিদাসজি। সাম্য,ন্যায়বিচার এবং সহমর্মিতার ভিত্তিতে এক সমাজ গঠনের তিনি ছিলেন প্রবক্তা। তাঁরশিক্ষাদর্শ শুধুমাত্র শাশ্বতই নয়, সমাজের সকল স্তরের সাধারণ মানুষের ক্ষেত্রে তা প্রাসঙ্গিকওবটে। আমাদের সমাজ ব্যবস্থায় ইতিবাচক কিছু পরিবর্তনের দিশারী ছিলেন গুরুরবিদাসজি। আমরা যখন ‘সবকাসাথ, সবকা বিকাশ’ – এই আদর্শকে সামনে রেখে কাজ করে যাই, তখন প্রত্যেক মানুষবিশেষত, দরিদ্র মানুষের সেবার ওপর গুরু রবিদাসজির বিশেষ গুরুত্বদান আমাদেরঅনুপ্রাণিত করে। গুরু রবিদাসজির একটি উদ্ধৃতি আমি এখানে স্মরণ করছি – প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে নতুন দিল্লীতে আজ কেন্দ্রীয় হিন্দি কমিটির ৩১তম বৈঠক অবস্হিত হয়। ঐ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সৃজনশীল অথচ বাস্তবসম্মত পরামর্শ প্রদানের জন্য কমিটির সকল সদস্যকে অভিনন্দন জানান। শ্রী মোদী কথাপ্রসঙ্গে বলেন, হিন্দি সহ সকল ভারতীয় ভাষার মাধ্যমে বিশ্বের সব জায়গার সঙ্গে সংযোগ রাখা সম্ভব। বিশ্বের প্রাচীনতম ভারতীয় ভাষা তামিল নিয়ে গর্ব করা যায় বলেও তিনি মন্তব্য করেন। দেশের সমস্ত ভাষাই হিন্দিকে সমৃদ্ধ করতে পারে। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সরকারের ‘এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত’ উদ্যোগের কথা জানান। বৈঠকে উপস্হিত ছিলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং। রাজভাষা বিভাগের সচিব বিভিন্ন ক্ষেত্রে কতটা প্রগতি হয়েছে তার খতিয়ান দেন বৈঠকে। আজকের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় হিন্দি অধিকার প্রকাশিত পুস্তিকা ‘গুজরাটী- হিন্দি ভান্ডারে’র আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন। মণিপুরের মুখ্যমন্ত্রী পদে শ্রী এন বীরেন সিংশপথ গ্রহণ করায় তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীতাঁর অভিনন্দন বার্তায় বলেছেন, “শ্রী এন বীরেন সিং সহ অন্যান্যরা শপথ গ্রহণ করায়তাঁদের আমার অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (১৯শে অক্টোবর,২০১৮) মহারাষ্ট্রের শিরডি সফরে যাবেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে শ্রী সাইবাবা সংস্থান ট্রাস্টের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কর্মকাণ্ডের শিলান্যাস করবেন। শ্রী সাইবাবা সমাধির শতবর্ষ উপলক্ষে একটি রৌপ্য মুদ্রারও তিনি আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন। এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মহারাষ্ট্রে ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা – গ্রামীণ’ (পিএমএওয়াই-জি)-র সুবিধাপ্রাপ্তদের হাতে গৃহপ্রবেশের সূচক হিসেবে ঘরের চাবি তুলে দেবেন। জনসভায় তিনি ভাষণও দেবেন। গুজরাটেরমুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপানিজি, মন্ত্রিসভায়আমার সহকর্মী কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধনজি, সুইডেনেরমন্ত্রী মহোদয়া মিসেস অ্যানা এক্সট্রম, নোবেলফাউন্ডেশনের ভাইস প্রেসিডেন্ট ডঃ গোরান হ্যানসন, প্রিয় বিজ্ঞানীমণ্ডলী, সৃজনশীলচিন্তাভাবনা, মননশীলতা এবং মৌল বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে কর্মপ্রচেষ্টার সর্বোচ্চস্বীকৃতি হল, নোবেল পুরস্কার। কিন্তু আজগুজরাটে নোবেল বিজয়ী বহু তারকার একত্র সমাবেশ এক ইতিহাস রচনা করতে চলেছে। এখানে উপস্থিতসকল নোবেল বিজয়ীদের আমি আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। আপনারা সকলেই ভারতের বিশিষ্টবন্ধু-স্থানীয়। আপনাদের মধ্যে হয়তো কয়েকজন এর আগেও কয়েকবার ভারত সফরে এসেছেন। আবারআপনাদের মধ্যেই একজনের জন্ম এখানে এবং তিনি বড় হয়ে উঠেছেন এদেশেরই ভাদোদরায়। দেশের তরুণছাত্রছাত্রীদের অনেককেই আজ এখানে উপস্থিত থাকায় আমি বিশেষভাবে আনন্দিত। আমি আজসকলের কাছেই আর্জি জানাব যে, আগামী কয়েক সপ্তাহ ধরে আপনারা সায়েন্স সিটিপরিদর্শনের জন্য আপনাদের বন্ধু ও পরিবার-পরিজনদের উৎসাহিত করুন। আমাদের ছাত্ররাআপনাদের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময়ের এক অসামান্য অভিজ্ঞতা লাভ করবেন এই সমাবেশে। সকলেরনিরন্তর ভবিষ্যতের লক্ষ্যে যে সমস্ত নতুন ও গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জ রয়েছে, সেগুলিমোকাবিলা করার কাজে এই অনুষ্ঠান তাঁদের অনুপ্রাণিত করবে বলেই আমি মনে করি। এই প্রদর্শনীএবং এই সিরিজটি যে আপনাদের সঙ্গে ছাত্রছাত্রী, বিজ্ঞান শিক্ষক তথা বিজ্ঞানীদেরমধ্যে এক ঘনিষ্ঠ যোগসূত্র গড়ে তুলবে সে বিষয়ে আমি আশাবাদী। আগামী ১৫ বছরেভারতকে আমরা কোন মাত্রায় উন্নীত করতে চাই, সে সম্পর্কে এক স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গীরয়েছে আমার সরকারের। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হল সেই কেন্দ্রবিন্দু, যাকে অবলম্বন করেআমাদের দৃষ্টিভঙ্গী প্রকৌশল তথা কর্মপ্রচেষ্টাকে বাস্তবায়িত করে তুলবে। বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্য হল দেশের সকল তরুণও যুবক-যুবতীদের কাছে নিশ্চিতভাবেই সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। প্রশিক্ষণ এবংভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুতির মাধ্যমে সবচেয়ে উপযুক্ত স্থানে আমাদের তরুণ ও যুবকরাকর্মপ্রচেষ্টার সঙ্গে যুক্ত হতে পারবেন। ভারত হয়ে উঠবে বৈজ্ঞানিক কর্মপ্রচেষ্টারক্ষেত্রে এক বিশেষ গন্তব্যস্থল। গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান এবং সাইবার পদ্ধতিসম্পর্কিত যে সমস্ত প্রধান প্রধান চ্যালেঞ্জ রয়েছে, তার মোকাবিলায় আমরা হয়ে উঠববিশেষভাবে উৎসাহিত ও অনুপ্রাণিত। আমাদের এমনএকটি পরিকল্পনা রয়েছে, যা আমাদের এই লক্ষ্যকে কাজে রূপান্তরিত করবে। দেশেরস্কুলগুলিতে বিজ্ঞান শিক্ষার উপযোগী কর্মসূচি উদ্ভাবনের জন্য আমরা আবেদন জানিয়েছিদেশের বিজ্ঞানীদের কাছে। এজন্য প্রয়োজন শিক্ষকদের উপযুক্ত প্রশিক্ষণ। দেশে তথা বিদেশের যে কোনও জায়গায় উপযুক্ত পদ ও কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেআপনারা হয়ে উঠবেন প্রতিযোগিতামুখী। আর এইভাবেইআপনাদের ‘স্টার্ট আপ’ ও শিল্প সংস্থাগুলি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে হয়ে উঠবে বিশেষভাবেপ্রতিযোগিতামুখী। ভারতের রয়েছে এক বিশাল জনগোষ্ঠী এবং শ্রেষ্ঠ শিক্ষক ওশিক্ষাবিদদের এক অসাধারণ সমাহার। তরুণছাত্রছাত্রীরা, আপনারাই হলেন সেই স্রোতোধারা, যা জ্ঞান ও বিশেষ পারদর্শিতারজলাশয়টিকে পরিপূর্ণ করে তুলতে পারে। আপনাদের প্রশিক্ষণ ও ভবিষ্যৎ-ই সূচনা করবে সেইবিশেষ সন্ধিক্ষণের। বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তির কল্যাণে মানবজাতি আজ সমৃদ্ধ। আমাদের বিজ্ঞানপ্রচেষ্টা কতটা পরিণতি লাভ করেছে, তা প্রমাণিত হবে তখনই, যখন আরও দায়িত্বশীলতারসঙ্গে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির দক্ষ ব্যবহারকে আমরা সম্ভব করে তুলতে পারব। অর্থাৎ, অদূরভবিষ্যতে বিজ্ঞানী হয়ে ওঠার পাশাপাশি বর্তমান বিশ্বের অভিভাবকও হয়ে উঠবেন আপনারাই। তাই, নোবেলপ্রদর্শনী এবং সায়েন্স সিটি থেকে অবশ্যই সুফল আহরণ করতে হবে আমাদের। বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি সারা বিশ্বেই হয়ে উঠেছে আর্থ-সামাজিক বিকাশে প্রচেষ্টায় এক বিশেষচালিকাশক্তি। দ্রুত বিকাশশীল ভারতীয় অর্থনীতিতে বৈজ্ঞানিক কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রেপ্রত্যাশা বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে উত্তরোত্তর। নোবেল পুরস্কারসিরিজ থেকে যে তিনটি বিশেষ ফল আমরা লাভ করতে পারি, সেগুলি সম্পর্কে এখন একটুআলোচনা করা যাক। প্রথমত, ছাত্র ও শিক্ষকদের কাজকর্ম এবং পারস্পরিক সম্পর্ক রক্ষারবিষয়টি একান্ত জরুরি। তাই তাঁদের সঙ্গে সম্পর্কচ্যূত হলে চলবে না। প্রদর্শনীকালেসমগ্র গুজরটের স্কুল শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময়ের সুযোগ লাভ সম্ভব হয়েউঠবে। দ্বিতীয়ত, স্থানীয় পর্যায়ে শিল্পোদ্যোগ প্রচেষ্টাকে উৎসাহ যোগানোদরকার। আমাদের যুবশক্তির মধ্যে রয়েছে শিল্পোদ্যোগ স্থাপনের বিশেষ উৎসাহ ওউদ্দীপনা। আমাদের বিজ্ঞানদপ্তরের মন্ত্রীরা এই উৎসাহ ও কর্মপ্রচেষ্টার জনক। আগামী পাঁচ সপ্তাহ ধরে বিজ্ঞানও প্রযুক্তি-চালিত ‘স্টার্ট আপ’-এর উদ্যোগ কিভাবে আরও জোরদার হয়ে উঠতে পারে, সেসম্পর্কে এক কর্মশালায় অংশগ্রহণের সু্যোগও আপনারা লাভ করবেন। আমি একথাও জানিযে, ১০টি নোবেল পুরস্কারজয়ী আবিষ্কারই স্মার্ট ফোন উদ্ভাবনের পেছেনে বিশেষভাবেউৎসাহ জুগিয়েছে। পুরস্কারজয়ীপদার্থ বিজ্ঞানীরা এই পৃথিবীকে রক্ষা করার পাশাপাশি বিদ্যুৎ সাশ্রয়ও সম্ভব করেতুলতে পারেন। ২০১৪ সালে নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছিল নীল এলইডি আলো আবিষ্কারেরজন্য। তিনজন বিশিষ্ট জাপানি বিজ্ঞানী আকাশাকি, আমানো এবং নাকামুরার প্রাথমিকগবেষণা প্রচেষ্টার ফলেই এই আবিষ্কার সম্ভব হয়ে উঠেছে। এর আগে, লাল ও সবুজ এলইডিনামে পরিচিত আলোর সঙ্গে যদি সাদা আলোর সমন্বয় ঘটানো যায়, তা হলে তা থেকে আলো পাওয়াযাবে একশো হাজার ঘন্টার জন্য। বহু নোবেলপুরস্কার বিজয়ী আবিষ্কার সমাজের স্বাস্থ্য ও কৃষি ক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছেবিরাটভাবে। যে সমস্তআন্তর্জাতিক চ্যালেঞ্জের আমরা বর্তমানে সম্মুখীন হয়েছি, সে সম্পর্কে জানার ও বোঝারএক আদর্শ মঞ্চ হল এই কেন্দ্রটি। কেন্দ্র ও রাজ্যেরএকযোগে এই চ্যালেঞ্জটিকে গ্রহণ করা উচিৎ এই বছরটিতেই। আমার তরুণবন্ধুরা! আপনারাই হলেন ভারতেরভবিষ্যতের স্থপতি। আপনারাই গড়ে তুলতে পারেন নতুন নতুন শীর্ষ, যা থেকে জন্ম নেবে একসর্বোচ্চ শৃঙ্গবিশেষ। যদি আমরা মূল ভিতটির দিকে অর্থাৎ, স্কুল-কলেজগুলির ওপরবিশেষভাবে নজর দিই, তা হলে শিক্ষকদের মাধ্যমেই এই আপাত অবিশ্বাস্য ঘটনাই হয়ে উঠতেপারে বাস্তব। আর এইভাবেই ভারত থেকে জন্ম নেবে শত সহস্র শৃঙ্গ। কিন্তু কঠোর শ্রমকেযদি আমরা এড়িয়ে চলি এবং শুধুমাত্র নীচের পর্যায়ে কাজকর্ম নিয়ে ব্যস্ত থাকি, তা হলেস্বপ্নের সেই সর্বোচ্চ শৃঙ্গ কখনই আমরা গড়ে তুলতে পারব না। আপনারা হয়েউঠুন অনুপ্রাণিত, হয়ে উঠুন উৎসাহী, আপনাদের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটুক, এটাই আমরাপ্রার্থনা করি। এই ধরণের একটিউদ্ভাবনী কর্মসূচির উদ্যোগ আয়োজনের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই নোবেল মিডিয়াফাউন্ডেশন, কেন্দ্রীয় জৈব প্রযুক্তি দপ্তর এবং গুজরাট সরকারকে। কেন্দ্রীয় টিমে রয়েছেন নিতি আয়োগের একজন বরিষ্ঠ উপদেষ্টা এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক যুগ্ম সচিব। সেখানকার পরিস্থিতি খতিয়ে দেখার পর রাজ্য প্রশাসন ও জেলা কর্তৃপক্ষের সঙ্গে আলোচনাক্রমে ত্রাণ ও ক্ষতিপূরণের সম্ভাব্য মাত্রা ও পরিমাণ সম্পর্কে রিপোর্ট পেশ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশ দিয়েছেন কেন্দ্রীয় টিমকে। গত শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, তাওয়াং-এ এই দুর্ঘটনা ঘটে। উনবিংশ শতাব্দীর বিশিষ্ট সমাজ সংস্কারক জ্যোতিবা ফুলের পূণ্যতিথি উপলক্ষে তাঁর উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শিক্ষা সংক্রান্ত একটি জাতীয় ডিপোজিটরি গড়ে তোলা এবং তা চালু করারপ্রস্তাবে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরনেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ ‘ডিজিটাল ভারত’ কর্মসূচিতে গতি এবং একনতুন মাত্রা এনে দিতে এই প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয় । শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আজ থেকে শুরু হওয়া খেলো ইন্ডিয়া যুব গেমস্‌-এ অংশ নেওয়া সকল ক্ষুদে বন্ধুদের আমার শুভেচ্ছা জানাই। এই প্রতিযোগিতায় সেরা ক্রীড়া নৈপুণ্যগুলি ফুটে উঠুক এবং যুবকদেরকে তাঁদের ক্রীড়া স্বপ্নগুলি পূরণে এই গেমস্‌ এক আদর্শ মঞ্চ প্রদান করুক। আরও বেশি খেলাধূলা, আরও ভালো সুস্বাস্থ্য এবং এক কর্মক্ষম জাতি! আর মাত্র পাঁচ মিনিট এই প্রয়াস দেশের মানুষের দৈহিক ভারসাম্য আরও বৃদ্ধি করবে। বুধবার, টেলিফোনে শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কথা বলেন সময় তিনি বলেন, প্যারিসে শীর্ষ জলবায়ু সম্মেলনের ঐতিহাসিক সাফল্যের পেছনে ভারতের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। দক্ষিণ আফ্রিকার কারিগরি দক্ষতা বিষয়ক গান্ধী মান্ডেলা কেন্দ্রটি গড়ে তোলার ব্যাপারেও দু-দেশের মধ্যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে। এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার জন্য ১ হাজার ১০৩ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। দেউঘরের এইমস্‌-এ থাকবে – ৭৫০টি শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতাল ও ট্রমা কেয়ার সুবিধা। প্রতি বছর এমবিবিএস স্তরে ১০০ জন ছাত্রছাত্রী ভর্তি হতে পারবেন। ১৫টি অপারেশন থিয়েটারের পাশাপাশি ২০টি স্পেশালিটি বা সুপার স্পেশালিটি দপ্তর। সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীকে ১৮৪৯ সালের সিঙ্গাপুর দ্বীপের একটি প্রাচীন মানচিত্রের প্রতিলিপি উপহার দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৮৪২-৪৫ সময়কালের এক সমীক্ষার ভিত্তিতে এই মানচিত্রটি প্রস্তুত করা হয়। ভারতের প্রধানমন্ত্রী মহামান্য শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২৬শে সেপ্টেম্বর ২০১৫ নিউ ইয়র্কে জি-৪ সম্মেলনের জন্য ব্রাজিলের রাষ্ট্রপতি মহামান্য শ্রীমতি দিলমা রউসেফ, জার্মানির চ্যান্সেলর মহামান্য শ্রীমতি এঞ্জেলা মার্কেল এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী মহামান্য শ্রী শিনজো আবেকে আমন্ত্রণ জানান| এই বৈঠকে বিভিন্ন বিষয় ভিত্তিক অধিবেশনের সারমর্মের উপর ভিত্তি করে বরিষ্ঠ আধিকারিকরা প্রায় দু ঘন্টার এক গুচ্ছ উপস্থাপনা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন। ২০১৫ সালের মধ্যে প্রত্যেক মন্ত্রকের কাজে অন্তত একটি মহাকাশ প্রযুক্তির প্রায়োগিক ব্যবস্থাকে চিহ্নিত করতে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সকল মন্ত্রকের প্রতি আহ্বান জানান| সাধারণ মানুষের উপকারের জন্য মহাকাশ প্রযুক্তির সম্ভাব্য কিছু প্রয়োগ নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি ব্যাখ্যামূলক চিত্র তুলে ধরেন : যেমন, জেলেদের মাছ ধরার সুবিধায় মাছের অবস্থিতির স্থান নির্ণয় করা, প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চয়ই যোজনার জন্য জলসেচের পরিকাঠামো, অবৈধ খনিজ পদার্থের খনন কোথাও হচ্ছে কিনা তা নির্ণয় করা| তেলেঙ্গানার রাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে, অন্ধ্রপ্রদেশের অধিবাসীদেরও আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন তিনি। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “তেলেঙ্গানার রাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবসে তেলেঙ্গানার জনসাধারণকে অভিনন্দন। আগামী বছরগুলিতে এই রাজ্য উন্নতির এক নতুন শিখরে আরোহন করবে এই আশা পোষণ করি। অন্ধ্রপ্রদেশের ভাই-বোনদেরও জানাই আমার অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী নমামি ব্রহ্মপুত্র উৎসবের জন্য শুভেচ্ছা পাঠিয়েছেন। এক বার্তায়তিনি বলেন, “অসম সরকার যে নমামি ব্রহ্মপুত্র উৎসব শুরু করছে সেজন্য তাদের অসংখ্যধন্যবাদ। ভারতের ইতিহাস ও সংস্কৃতির ক্ষেত্রে নদীগুলিচিরকালই এক উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রেখেছে। ভারতের বিকাশে পরিচ্ছন্ন ও পরিবেশ-অনুকূলনদীর জলধারা সুনিশ্চিত করতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নয়াদিল্লিতে হিন্দুস্থান টাইমস্‌ লিডারশিপ সামিটে ভাষণ দেন। আর্থিক সংস্কার প্রসঙ্গে তাঁর ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার ব্যাখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কয়েকটি বড় আর্থিক সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, এই সাফল্যের মধ্যে রয়েছে গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদনের (জি ডি পি) বিকাশ হার ৭.৪ শতাংশে নিয়ে যাওয়া, ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা প্রভৃতি কেন্দ্র-রাজ্য একযোগে কাজ করলেই ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব বলে শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন। শ্রী মোদী আরও জানান, চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশের ভিত্তিতে রাজ্যগুলিকে এখন বাড়তি অর্থ সাহায্য দেওয়া হচ্ছে। রান্নার গ্যাসে সরাসরি ভর্তুকি হস্তান্তর এবং এল ই ডি আলো ব্যবহারের কর্মসূচি শুরু হওয়ার পর কীভাবে হাজার-হাজার কোটি টাকা সঞ্চয় হয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহারযোগ্য ইউরিয়ার যাতে অন্যত্র প্রয়োগ ঠেকানোর জন্য, তার জন্য ইউরিযায় নিমের আস্তরন দেওয়া হচ্ছে। বিহারে যে দুটি রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানা গড়ে তোলা হবে, তাতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের কথাও শ্রী মোদী তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন। এই হিসাব অনুযায়ী, ৭৮ দিনের জন্য সর্বোচ্চ বোনাসের পরিমাণ হবে ৮৯৭৫ টাকা। ছাত্রছাত্রীদের বৃত্তি ও ফেলোশিপের টাকা প্রদান সম্পর্কে ক্ষোভ ও অভিযোগের নিরসনসম্পর্কে ‘প্রগতি’র মাধ্যমে এদিন খোঁজখবর নিলেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন রাজ্য তাদের সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলিতেএই কর্মসূচির অগ্রগতি সম্পর্কে অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রীকে। জেলা পর্যায়ে এই রোগের মোকাবিলায় দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার (৩০শে অক্টোবর) নতুন দিল্লীতে আয়োজিত ভারত-ইতালি প্রযুক্তি শীর্ষ বৈঠকে ভাষণ দেন। এই উপলক্ষে ইতালির প্রধানমন্ত্রী মিঃ জেসপ কন্তে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভারত-ইতালি শিল্প গবেষণা ও উন্নয়ন সহযোগিতা কর্মসূচিটির পরবর্তী পর্যায়ের সূচনার কথা ঘোষণা করেন। তিনি বলেন, এই কর্মসূচি দেশীয় শিল্প সংস্থা ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলিতে নতুন ধরণের পণ্যসামগ্রী উৎপাদনের সুবিধা প্রদান করবে। প্রযুক্তির গুরুত্ব সম্পর্কে বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত প্রযুক্তিকে সামাজিক ন্যায়বিচার প্রদান, ক্ষমতায়ন, আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণ ও স্বচ্ছতার উদ্দেশ্যগুলি পূরণের মাধ্যম হিসেবে সদ্ব্যবহার করছে। বিভিন্ন পরিষেবা একেবারে প্রান্তিক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টিকে সুনিশ্চিত করতে সরকার প্রযুক্তিকে কাজে লাগাচ্ছে বলেও তিনি জানান। শ্রী মোদী বলেন, সরকার সাধারণ মানুষের মধ্যে বিজ্ঞানমূলক মানসিকতা গড়ে তোলার পাশাপাশি প্রযুক্তি প্রয়োগের মানসিকতা বাড়ানোর ওপরও গুরুত্ব দিচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি ‘অটল উদ্ভাবন মিশন’, ‘উমঙ্গ অ্যাপ’ এবং সারা দেশে ছড়িয়ে থাকা ৩ লক্ষ অভিন্ন পরিষেবা কেন্দ্রের কথা উল্লেখ করেন। এই সমস্ত প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধার মাধ্যমে সরকার এখন সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে গিয়েছে। ভারতীয় মহাকাশ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচি উদ্ভাবন ও উৎকর্ষতার এক নজির। জীবন শৈলীর সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন উপকরণের নকশা নির্মাণের ক্ষেত্রে ভারত ও ইতালির মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধি পাওয়ার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করবেন শ্রী মোদী ঝাঁঝরের ভাদসায় জাতীয় ক্ন্যান্সার প্রতিষ্ঠান জাতির উদ্দেশ উৎসর্গ করবেন পঞ্চকুলায় জাতীয় আর্য়ুবেদ প্রতিষ্ঠানের শিলান্যাস করবেন তিনি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল হরিয়ানার কুরুক্ষেত্র সফর করবেন। স্বচ্ছ শক্তি- ২০১৯ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানেও তিনি যোগ দেবেন। হরিয়ানার জন্য একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাসেরও কর্মসূচি রয়েছে তাঁর। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী স্বচ্ছ শক্তি ২০১৯ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন এবং এই উপলক্ষ্যে প্রাপকদের পুরস্কার প্রদান করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী কুরুক্ষেত্রে আয়োজিত স্বচ্ছ সুন্দর শৌচালয় প্রদর্শনী ঘুরে দেখবেন এবং এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। জাতীয় স্তরের স্বচ্ছ শক্তি ২০১৯- সারা দেশের মহিলা গ্রাম পঞ্চায়েত সদস্য ও প্রধানদের এক অভিনব অনুষ্ঠান। এ বছরের অনুষ্ঠানে ১৫ হাজারের বেশি মহিলা যোগ দেবেন বলে আশা করা হচ্ছে। মহিলাদের প্রকৃত ক্ষমতায়নই এ ধরনের অনুষ্ঠান আয়োজনের অন্যতম উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী আন্তর্জাতিক মহিলা দিবস উদযাপন উপলক্ষ্যে গুজরাটের গান্ধীনগরে ২০১৭তে প্রথমবার স্বচ্ছ শক্তি অনুষ্ঠানের সূচনা করেছিলেন। উন্নয়নমূলক প্রকল্প ঝাঁঝরের ভাদসায় জাতীয় ক্যান্সার প্রতিষ্ঠান জাতির উদ্দেশে উৎসর্গীকরণ ঝাঁঝরে বর্তমান এইমস ক্যাম্পাসে জাতীয় স্তরের অত্যাধুনিক পরিষেবা সম্বলিত এই ক্যান্সার প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হচ্ছে। ফরিদাবাদে ইএসআইসি মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের উদ্বোধন ফরিদাবাদের এই হাসপাতালটি উত্তর ভারতে ইএসআইসি–র প্রথম চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান। পঞ্চকুলায় জাতীয় আর্য়ুবেদ প্রতিষ্ঠানের শিলান্যাস পঞ্চকুলার শ্রী মাতা মনসা দেবী মন্দির চত্ত্বরে এই আর্য়ুবেদ প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলা হচ্ছে। আর্য়ুবেদ চিকিৎসা তথা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে শিক্ষা ও গবেষনার কাজে এটি জাতীয় স্তরের প্রতিষ্ঠান হয়ে উঠবে। প্রতিষ্ঠানের নির্মাণকাজ শেষ হলে হরিয়ানা ও আশপাশের রাজ্যগুলির বহু সাধারণ মানুষ উপকৃত হবেন। কুরুক্ষেত্রে শ্রীকৃষ্ণ আয়ুষ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস পানীপথে ‘পানীপথের যুদ্ধের সঙ্গে সম্পর্কিত সংগ্রহালয়ের’ শিল্যান্যাস ঐতিহাসিক পানীপথের যুদ্ধে অংশ নেওয়া বীর সেনানীদের সম্মান জানাতেই এই সংগ্রহালয় গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশ গঠনে যে সব বীর সেনানী অমূল্য অবদান রেখেছেন, সেইসব হারিয়ে যাওয়া বীর ব্যক্তিত্বদের সম্মান জানাতে কেন্দ্রীয় সরকারের উদ্যোগের অঙ্গ হিসাবে এই সংগ্রহালয়টি গড়ে তোলার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। কার্নালে পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় স্বাস্হ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী কার্নালে পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় স্বাস্হ্য বিজ্ঞান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিলান্যাস করবেন। পাকিস্তানে বহু বছর ধরে থাকাকালে গীতাকে স্নেহ ও ভালবাসা দিয়ে দেখাশোনা করার জন্য করাচির এধি ফাউনডেশন–এর প্রতিষ্ঠাত্রী শ্রীমতি বিলকিস বানো এধির প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী| প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন যে, ভারত এই প্রশংসার প্রতীক হিসেবে এধি ফাউনডেশনকে ১ কোটি টাকা দেবে, এটা শুধুমাত্র গীতাকে দেখাশোনা করেছে বলে নয়, বরং ফাউনডেশন যে সমস্ত চমৎকার কাজ করে চলেছে তার জন্য| শ্রীমতি বিলকিস বানো এধি গুজরাটের জুনাগড়ের বান্তয়ায় জন্ম নিয়েছিলেন, এটা জেনে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে তাঁর পরিবার সহ জুনাগড় সফর করার আমন্ত্রণ জানান| ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মিঃ ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ আজ ভারতে এসে পৌঁছলে তাঁকে সাদর অভ্যর্থনা জানান প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রেসিডেন্ট ওলাঁদ-এর সঙ্গে চণ্ডীগড় ও দিল্লিতে আলোচনায় মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে এক ট্যুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ‘ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ’কে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপনের মূহুর্তে তাঁকে প্রধান অতিথি রূপে পেয়ে আমরা আনন্দিত ও সম্মানিত। প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ-এর সঙ্গে আমি চন্ডীগড় ও দিল্লিতে আলোচনায় মিলিত হবো। আগামীকাল নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিরসম্মেলনে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির পদস্থ আধিকারিক এবং সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকগুলির শীর্ষস্থানীয় আধিকারিকরাও যোগ দেবেন এই অনুষ্ঠানে। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির শ্রেষ্ঠপন্থাপদ্ধতির ওপর বিশেষ উপস্থাপনাও পেশ করা হবে এদিনের সম্মেলনে। পরে, কর্পোরেট প্রশাসন ও পরিচালন, মানবসম্পদ ব্যবস্থাপনা, আর্থিক সহায়সম্পদবৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব এবং উদ্ভাবন প্রচেষ্টা সহ বিভিন্ন বিষয়ের ওপর উপস্থাপনা পেশকরা হবে প্রধানমন্ত্রীর উপস্থিতিতে। সকলকেই আমারভালোবাসা ও অভিনন্দন জানাই। এই বিশেষ সমাবেশেউপস্থিত থাকতে পেরে আমি নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। এই দিনটি আবারমহাশিবরাত্রির মতো একটি পূণ্য উপলক্ষের সঙ্গে সম্পৃক্ত। উৎসবের কোন অভাবনেই আমাদের দেশে, কিন্তু এই বিশেষ উৎসবের পূর্বে আমরা যোগ করি ‘মহা’ শব্দটি। দেবতাও রয়েছেনঅনেক, কিন্তু মহাদেব শুধু একজনই। কোন নির্দিষ্টলক্ষ্য বা উদ্দেশ্যের সঙ্গে ঐশ্বরিকতার মিলনেরই অপর নাম মহাশিবরাত্রি, যা তমসা এবংঅন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে জয়লাভের কথাই ঘোষণা করে। তা আমাদেরঅনুপ্রাণিত করে সাহসিকতার সঙ্গে দেবতার পক্ষে যুদ্ধ করার জন্য। শীত থেকে উজ্জ্বলসজীবতায় উত্তরণের মধ্য দিয়ে তা চিহ্নিত করে ঋতু বদলের পালাকে। মহাশিবরাত্রি উৎসবপালিত হয় সারা রাত ধরেই। সদা সতর্ক থাকার বোধকে জাগ্রত করে তোলে এই উপলক্ষটি।প্রকৃতির সুরক্ষা এবং পরিবেশ ও পারিপার্শ্বিকতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখেকর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া সম্পর্কে তা আমাদের সচেতন করে তোলে। আমার নিজের রাজ্যগুজরাটে অবস্থিত সোমনাথ। সাধারণ মানুষের আহ্বান এবং সেবা ও কর্তব্যের আকুতি আমাকেটেনে নিয়ে গেছে বিশ্বনাথের পুণ্যভূমি কাশীতে। সোমনাথ থেকেবিশ্বনাথ, কেদারনাথ থেকে রামেশ্বরম এবং কাশী থেকে কোয়েম্বাটোর – যেখানেই আমরামিলিত হই না কেন, ভগবান শিব বিরাজমান সর্বত্রই। শতাব্দীর পরশতাব্দী ধরে, প্রতিটি যুগে এবং প্রতিটি সময়ে জীবনযাপন করে গেছেন অগণিত ভক্ত ও পুণ্যার্থীজন। বিভিন্ন প্রান্তথেকে তাঁদের আগমন। তাঁদের ভাষা হয়তোভিন্ন, কিন্তু ঐশ্বরিকতার জন্য তাঁদের আকুতি ও আকাঙ্ক্ষার প্রকৃতি কিন্তু সর্বদাইএক ও অভিন্ন। এই আকুতি দানা বেঁধেরয়েছে প্রতিটি মানব হৃদয়ে। কাব্য, সঙ্গীত এবং ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছে আমাদের এইবসুন্ধরা। যোগসাধনা আজঅতিক্রম করে এসেছে অনেকটা পথ। যোগসাধনা তথাযোগাভ্যাসের জন্য গড়ে উঠেছে বিভিন্ন নামে নানা ধরনের শিক্ষা ও অনুশীলন কেন্দ্রযেখানে শিক্ষা ও অনুশীলন হয় যোগাভ্যাসের। নতুবা, আমাদের হয়তোআবিষ্কার করতে হবে অন্যকোন যোগসাধনার যা আমাদের আত্মাকে নতুন করে খুঁজে পেতেসাহায্য করবে এবং রক্ষা করবে যোগসাধনার ঐতিহ্যকে। যোগাভ্যাস তথাযোগসাধনা এক বিশেষ অনুঘটকের ভূমিকা পালন করে যা উত্তরণ ঘটায় জীব থেকে শিব-এ। পরিবার, সমাজ,চারপাশের মানুষ, পাখি ও জীবজন্তু সহ প্রাণীকূল তথা গাছপালা যাদের সঙ্গে আমরা বাসকরি এই গ্রহটিতে, তাদের সঙ্গে মিলন ও সমন্বয়ের অভিন্নতারই অপর নাম যোগ তথাযোগসাধনা। এই বৈচিত্র্যই হল ভারতের মূল শক্তি যাসমগ্র ভারতকে এক অটুট বন্ধনে আবদ্ধ করে রেখেছে। ভগবান শিবের কথা চিন্তা করলেই আমাদেরমানশ্চক্ষে ভেসে ওঠে হিমালয়ের বিরাটত্বের মধ্যে কৈলাসে তাঁর গরিমাময় উজ্জ্বলউপস্থিতি। যদি দেবী পার্বতীর কথা চিন্তা করি, তাহলে বিশাল মহাসাগরবেষ্টিতসৌন্দর্যমণ্ডিত কন্যাকুমারীর কথা আমাদের মনে পড়ে যায়। শিব-পার্বতীর মিলন হল হিমালয়পর্বতমালার সঙ্গে সঙ্গম মহাসমুদ্রের। শিব ও পার্বতী মিলন তথা অভিন্নতারই একবার্তা। অভিন্নতার এই বার্তার প্রকাশ ঘটেছেনানাভাবে। দেবাদিদেব মহাদেবের গলায় জড়িয়ে রয়েছেএকটি সাপ। আবার, গণেশ ঠাকুরের বাহন হল ইঁদুর। সাপ ও ইঁদুরের মধ্যে সম্পর্কেরজটিলতা আমাদের অজানা নয়। কিন্তু লক্ষ্য করুন, তারাও কিন্তু বাসকরে পারস্পরিক সহাবস্থানের মধ্যেই। দেবাদিদেব মহাদেবের পরিবারিক বৈচিত্র্যসত্ত্বেও ঐক্য ও সম্প্রীতির বোধ ও অনুভূতি কিন্তু স্বমহিয়াম উজ্জ্বল। বৈচিত্র্য আমাদের মধ্যে দ্বন্দ্ব বাসংঘাতের সৃষ্টি করে না। আমরা তাকে বরণ করে নিই পরম সমাদরে, আন্তরিকতার সঙ্গেই। দেব-দেবীকে যেমনভাবে আরাধনা করা হয়, সেভাবেইপুজো করা হয় কোন পাখি, জন্তু বা গাছকে। প্রকৃতির প্রতি এই যে শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রমেরমনোভাব, এর থেকে বড় উদাহরণ আর কি-ই বা হতে পারে। যে সমস্ত মূল্যবোধকে গ্রহণ করে আমাদের পূর্বপুরুষরাতাঁদের জীবন অতিবাহিত করে গেছেন, তা হল সেই সমস্ত গুণ বা ধর্ম যা ভারতীয় সভ্যতাকে ধারণ করেরয়েছে শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে। সবদিক থেকেই নতুন নতুন মত ও চিন্তা গ্রহণ করার জন্যআমাদের মনের আগলটাকে খুলে দেওয়া উচিৎ। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশতঃ আমাদের মধ্যে রয়েছেনএমন কিছু ব্যক্তি যাঁরা নিজেদের অজ্ঞতাকে আড়াল করার জন্য কঠোরভাবে নতুনচিন্তাভাবনা ও অভিজ্ঞতার স্রোতকে রুদ্ধ করে দিতে উদ্যত। কোন ধ্যান-ধারণা বহু প্রাচীন – এই যুক্তিতে কোন কিছুঅস্বীকার বা অগ্রাহ্য করার প্রবণতা ক্ষতিকর হয়ে উঠতে পারে। প্রয়োজন সেইচিন্তাভাবনাকে বিশ্লেষণ করে অনুভব ও উপলব্ধির চেষ্টা করা যাতে সহজবোধ্যভাবে তা বহনকরে নিয়ে যাওয়া যায় পরবর্তী প্রজন্মের কাছে। নারীর ক্ষমতায়ন ছাড়া মানবসমাজের অগ্রগতি অসম্পূর্ণ থেকেযায়। মনে রাখতে হবে, এখনকার উন্নয়ন নারীর উন্নয়ন নয়, বরং নারীর নেতৃত্বে উন্নয়ন। আমি গর্বিত যে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে মূল ভূমিকাইহল নারীর। যা কিছু গতানুগতিক তা ভেঙ্গে-চূরে দিয়ে, সমস্ত বাধাঅতিক্রম করে তাঁরা এক নতুন পথের সন্ধান দিয়ে গেছেন। আপনাদের হয়তো শুনতে খুবই ভালো লাগবে যে ভারতে আমরা বলেথাকি – “নারী তু নারায়ণী, নারী তু নারায়ণী” অর্থাৎ, নারী হলেন এক ঐশ্বরিক শক্তির বহিঃপ্রকাশ। কারণ মা হলেন এমনই একজন যিনিনিঃশর্তভাবেই সদা অন্তর্ভুক্ত। একুশ শতকের ক্রমপরিবর্তনশীল জীবনশৈলী নতুন নতুনচ্যালেঞ্জ নিয়ে উপস্থিত হয়েছে আমাদের সামনে। মানুষের জীবনশৈলীর সঙ্গে সম্পর্কিত রোগ-ব্যাধি, উদ্বেগও উৎকন্ঠার সাথে যুক্ত অসুখ-বিসুখ আজ একটি সাধারণ বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যোগাভ্যাস যে মানুষের উদ্বেগ-উত্তেজনা প্রশমনে সাহায্যকরে এবং অনেক অসুখ-বিসুখকেই নিয়ন্ত্রণে রাখে, এর দৃষ্টান্ত রয়েছে প্রচুর। দেহকেযদি আমরা মনের মন্দির রূপে গড়ে তুলতে চাই, তাহলে যোগসাধনা হল সেই মন্দিরের স্থপতি। এই কারণেই স্বাস্থ্য বিমার একটি ছাড়পত্র বা পাসপোর্টবলে আমি মনে করি যোগসাধনাকে। কারণ যোগ শুধুমাত্র রোগমুক্তিই ঘটায় না, মানুষকেসুস্থ থেকে সুস্থতর করে তোলে। তাই যোগ হল একাধারে রোগমুক্তি ও ভোগমুক্তির এক বিশেষপথ। যোগসাধনা চিন্তা, কাজ, জ্ঞান ও নিষ্ঠার দিক থেকে একজনব্যক্তি মানুষকে আরও উন্নততর করে তুলতে পারে। যোগাভ্যাসকে শুধুমাত্র শরীর সচল রাখার লক্ষ্যে কয়েকটিশারীরিক ব্যয়াম মাত্র মনে করলে ভুল করা হবে। বিভিন্ন ফ্যাশন শো-এ মানুষ কিভাবে নিজেদের শরীরকে বিভিন্নভঙ্গিমায় নিয়ে যায় তা আপনারা নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন। কিন্তু তাঁরা সকলেই যোগী নন। যোগাভ্যাস হল যে কোন ধরণের শারীরিক ব্যয়ামেরই অনেকঊর্ধ্বে। যোগসাধনার মধ্য দিয়ে আমরা জন্ম দিতে পারি এক নতুন যুগের– মিলন ও সম্প্রীতির এক নতুন অধ্যায়ের। রাষ্ট্রসঙ্ঘে যখন ভারত আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনেরপ্রস্তাব উত্থাপন করে সকলেই সাদরে তা গ্রহণ করেছিল। ২০১৫ এবং ২০১৬ – এই দুটি বছরেই ২১ জুন দিনটিমহাসাড়ম্বরে পালিত হয়েছে যোগ দিবস রূপে। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনের অনুষ্ঠানে এইভাবে বিশ্বেরবিভিন্ন জাতির একত্রে মিলিত হওয়ার ঘটনা যোগের মহত্ব – মিলন ও অভিন্নতার বাণীইপ্রচার করেছে। এক বৃহত্তর লক্ষ্যে যেভাবেতাঁরা তাঁদের শক্তি ও উৎসাহকে নিয়োগ করেছেন, তাও আমি লক্ষ্য করেছি। যোগাভ্যাসকে গ্রহণ করার জন্য আদিযোগী অনুপ্রাণিত করবেনবহু প্রজন্মকেই। আমাদের সকলকে এখানে এইভাবে একত্রিত করার জন্য কৃতজ্ঞতা জানাইসদগুরুকে। আজমের শরীফে খাজা মইনুদ্দিন চিস্তির দরগায় ‘চাদর’ অর্পণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নয়াদিল্লিতে তা তুলে দিলেন কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়ক তথা সংসদীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী মুখতার আব্বাস নকভি এবং প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রতিমন্ত্রী ডঃ জিতেন্দ্র সিং-এর হাতে। গরিব নওয়াজের মানবসেবা আগামী প্রজন্মগুলির কাছে বিশেষ অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। ২০১৭-র শিল্পোদ্যোগসম্পর্কিত বিশ্ব সম্মেলন ভারতে আয়োজনের জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে ভারতেরযে মউ স্বাক্ষরিত হয়েছিল, কর্মপরবর্তী প্রক্রিয়া হিসেবে তা আজ এখানে অনুমোদিত হলপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভারবৈঠকে। ঐ মউ বা সমঝোতাপত্রে এই শীর্ষ সম্মেলন সুষ্ঠুভাবে আয়োজন ও পরিচালনার জন্যদু’পক্ষের মধ্যে দায়-দায়িত্ব, সহযোগিতা বিনিময় ইত্যাদির সুস্পষ্ট উল্লেখ ছিল। ঐ বিশ্ব সম্মেলনেবিশ্বের বড় বড় শিল্প সংস্থাগুলির সঙ্গে সংযোগ ও যোগাযোগ স্থাপনের এক বিশেষ সুযোগ সম্প্রসারিতহয় শিল্পোদ্যোগী এবং বিনিয়োগ কর্তাদের কাছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কিরঘিজস্তানের জনগণকে তাঁদের স্বাধীনতা দিবসে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “কিরঘিজস্তানের জনগণকে তাঁদের স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। মধ্য এশিয়ার এই দেশটি ভারতের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার দ্বারকার দ্বারকাধীশ মন্দিরেপ্রার্থনার মধ্য দিয়ে তাঁর দু’দিনের গুজরাট সফরের সূচনা করেন| এরপর প্রধানমন্ত্রী ওখা ও বেয়ট দ্বারকার মধ্যে সংযোগকারী সেতু এবং অন্যান্যসড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস করেন| প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, সরকার মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার পূরণ করতে চায়এবং দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করতে চায়| নেপালেরপ্রধানমন্ত্রী পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য শ্রী শের বাহাদুর দেউবা-কে অভিনন্দিতকরেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “নেপালেরপ্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হওয়ার জন্য শ্রী শের বাহাদুর দেউবাকে দূরভাষ মারফৎ অভিনন্দনজানিয়েছি আমি। এর আগে ‘মাই গভ’ প্ল্যাটফর্ম থেকে জনগণকে হিন্দি কিংবা ইংরাজিতে ‘মন কি বাত’-এর জন্য মাশুলহীন নম্বর ১৮০০ ৩০০০ ৭৮০০-এ নিজের বক্তব্য রেকর্ড করার জন্য অনুরোধ করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করে জানান, “@mygovindia দারুণ উদ্যোগ নিয়েছে, যার মাধ্যমে আপনারা এই সপ্তাহের ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে পারেন। আমি কিছু ভয়েস মেসেজ শুনেছি সেগুলি চমৎকার। এরকম মেসেজ আসতে থাকুক । সেসেল্‌শ-এর১২ সদস্যের এক সংসদীয় প্রতিনিধিদল আজ এখানে সাক্ষাৎ করে প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ঐ দেশের সংসদের অধ্যক্ষ মিঃ প্যাট্রিক পিলয়-এর নেতৃত্বে আগতপ্রতিনিধিদলের মধ্যে ছিলেন সেখানকার সরকারি কর্মপ্রচেষ্টা সম্পর্কিতঅন্যতম প্রধানমিঃচার্লস দ্য কম্যারমন্ড। দু’দেশেরমধ্যে সংসদীয় বিনিময় কর্মসূচি প্রসারের বিষয়টিকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। ভারতমহাসাগর অঞ্চল সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ও সেসেল্‌শ-এর মধ্যে যে সক্রিয় ও বলিষ্ঠঅংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে তারও বিশেষ প্রশংসা করেন তিনি। দ্বিপাক্ষিকসহযোগিতা বৃদ্ধি এবং দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে বিনিময় কর্মসূচি প্রসারের সম্ভাবনাসম্পর্কে প্রতিনিধিদলের সঙ্গে মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী। ফারহিঙ্গস্তানের প্রধান মাননীয় হাদিদ আদেল, ডঃ আদেল ও ডঃ জানাতির জ্ঞানসমৃদ্ধ আলোচনা ইতিমধ্যেই এই সম্মেলনের মূল সুরটি বেঁধে দিয়েছে। খুব উপযুক্ত সময়েই আয়োজিত হয়েছে আপনাদের এই সম্মেলন। আমাদের দুই শতকের প্রাচীন সম্পর্কের স্মৃতি রোমন্থনের এটি একটি বিশেষ মুহূর্ত। আমাদের সমাজে যাঁরা চরমপন্থী আদর্শে বিশ্বাসী তাঁদের উচিত ও যোগ্য জবাবদেওয়ার এটি একটি উপযুক্ত মঞ্চ। আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সৌন্দর্য ও সমৃদ্ধির সঙ্গে তরুণ প্রজন্মকে পরিচিত করানোর জন্য আমাদের দায়িত্ব পালনের এটি এক সঠিক মুহূর্ত। এই কাজটি শিক্ষিত ও বিদগ্ধ পণ্ডিতজন ছাড়া আর কেউই ভালোভাবে সম্পন্ন করতে পারেন না। ফার্সি ভাষায় ভারতীয় উপমহাদেশ সম্পর্কে যে জ্ঞানকোষ তিনি প্রকাশ করতে চলেছেন, তার কাজ সম্পূর্ণ হলে পণ্ডিত ও গবেষকদের কাছে এক বিরাট সেবা পৌঁছে যাবে। ইরানের বিদগ্ধ পণ্ডিত ও চিন্তাবিদ তারকাদের এই সমাবেশে উপস্থিত থাকতে পারা শুধুমাত্র একটি বিশেষ সুযোগই নয়, সম্মানও বটে। বর্তমান বিশ্বে কৌশলগত মিলন বা সম্প্রীতির কথা বলে থাকেন রাজনৈতিক পণ্ডিতরা। ভূতপূর্ব পদস্থসরকারি আধিকারিক শ্রী নরেশ চন্দ্রের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর মৃত্যুতে আমি ব্যথাহত। “ভারতীয় উপকূলরক্ষী বাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবসে বাহিনীর কর্মীদের জানাই আমার অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে আজ নতুন দিল্লির ৭, লোককল্যাণ মার্গে প্রথম ফিলিপ কোটলার প্রেসিডেনশিয়াল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে। এই পুরস্কার প্রদানের ক্ষেত্রে মানুষ, মুনাফা ও গ্রহ সংক্রান্ত তিনটি বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। দেশে অর্থনৈতিক, সামাজিক ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে অনন্য সাফল্য এসেছে ভারতের প্রতি তাঁর নিঃস্বার্থ সেবা এবং অক্লান্ত পরিশ্রমের দরুণ। তাঁর নেতৃত্বে ভারত এখন উদ্ভাবনী কেন্দ্র এবং মূল্য সংযুক্ত উৎপাদনের (মেক ইন ইন্ডিয়া) পাশাপাশি তথ্যপ্রযুক্তি, অ্যাকাউন্টিং এবং আর্থিক ক্ষেত্রের মতো পেশাদারী পরিষেবা প্রদানে গ্লোবাল হাব হিসেবে চিহ্নিত হয়েছে। ঐ শংসাপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়েছে, সামাজিক সুযোগ-সুবিধা ও আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য অভিনব পরিচিতি সংখ্যা বা আধার-সহ ডিজিটাল বিপ্লবের (ডিজিটাল ভারত) মতো উদ্যোগগুলি তাঁর দূরদৃষ্টির পরিচায়ক। এই সমস্ত উদ্যোগ নতুন শিল্পোদ্যোগ স্থাপন, সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুবিধা-সহ দেশের জন্য একবিংশ শতকের উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া’, ‘ডিজিটাল ভারত’ ও ‘স্বচ্ছ ভারত’-এর মতো উদ্যোগগুলির কথাও শংসাপত্রে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, এই উদ্যোগগুলি ভারতকে বিশ্বের অন্যতম লাভজনক উৎপাদন কেন্দ্র ও বাণিজ্যিক গন্তব্যে পরিণত করেছে। অধ্যাপক ফিলিপ কোটলার কেলগ স্কুল অফ ম্যানেজমেন্টের নর্থওয়েস্টার্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের মার্কেটিং-এর বিশ্ব খ্যাত অধ্যাপক। প্রধানমন্ত্রীঅন্ধ্রপ্রদেশের নতুন রাজধানীশহরের কাজ ত্বরান্বিত করতেঅন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীযে উৎসাহ দেখিয়েছেন তার প্রশংসাকরেন। তিনি বলেন, নগরায়নকেএকটি সুযোগ হিসেবে দেখতে হবে, চ্যালেঞ্জহিসেবে নয়। তিনি আশা প্রকাশকরেন, দেশেরসব শহরের কাছেই অমরাবতী মডেলহিসেবে চিহ্নিত হবে। তেলাঙ্গানারমুখ্যমন্ত্রী শ্রী কে. চন্দ্রশেখররাও এই অনুষ্ঠানে বিশেষভাবেআমন্ত্রিত হওয়ায় শ্রী মোদীআনন্দ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, তেলাঙ্গানাএবং অন্ধ্রপ্রদেশের মানুষেরকাছে তেলেগু হচ্ছে তাদেরপ্রাণের পরশ এবং আশা প্রকাশকরেন যে, দুটিরাজ্যেরই দ্রুত প্রগতি ঘটবে। শ্রীমোদী তিরুপতিতে শ্রী ভেঙ্কটেশ্বরামোবাইল এবং ইলেক্ট্রনিক্সহাব-এরশিলান্যাস-ওকরেন। পাশাপাশি, তিরুপতিতেতিরুমালা মন্দিরে পুজো-ওদেন। বালাজী দেবদেশের মানুষের জীবনে সুখ এবংসমৃদ্ধি নিয়ে আসুন”। তেলেঙ্গানাররাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। “তেলেঙ্গানারজনসাধারণকে রাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবসের অভিনন্দন। আগামী দিনগুলিতে এই রাজ্যটির অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্যআমি প্রার্থনা জানাই। অন্ধ্রপ্রদেশেরকর্মচঞ্চল জনসাধারণকে জানাই আমার শুভেচ্ছা। দেশের সীমান্ত সুরক্ষায় সেনাকর্মীদের শৌর্য ও আত্মত্যাগের মহান পরম্পরাকে এই প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী প্রদর্শনীতে বিভিন্ন সেক্টরে যুদ্ধের নানারকম ছবি ঘুরে দেখেন। তিনি ১৯৬৫-এর যুদ্ধেঅংশ নেওয়া কয়েকজন সেনার সঙ্গেও মিলিত হন। সেই সময় সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানরা উপস্থিত ছিলেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার বেশ কয়েকজন সদস্যও সেসময় সেখানে ছিলেন। প্রদর্শনী ঘুরে দেখার পর এক ট্যুইটে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৬৫-এর যুদ্ধে আমাদের সেনাবাহিনীর শৌর্য ও আত্মত্যাগ প্রত্যেক ভারতীয়ের স্মৃতিতে জাগরূক হয়ে রয়েছে। “এশিয়ানচ্যাম্পিয়নস্‌ ট্রফি ২০১৬ জেতার জন্য আমাদের মহিলা হকি দলকে অভিনন্দন। এই নতুন ধারায় বলা হয়েছে, লেখকের লিখিত অনুমতি ছাড়া কেউ কোন অডিও-ভিস্যুয়াল রেকর্ডের যন্ত্র ব্যবহার করে জেনেশুনে কোন চলচ্চিত্র বা চলচ্চিত্রের অংশ তৈরি কিংবা তা প্রদর্শন করতেপারবেন না। ১৯৫৭ সালের কপিরাইট আইনের ২ডি ধারায় ‘স্রষ্টা’ শব্দটির বিস্তারিত অর্থ দেওয়া রয়েছে। প্রসঙ্গত, চলচ্চিত্রের মাধ্যম, যে প্রযুক্তি ও পদ্ধতি এই মাধ্যমে ব্যবহার করা হয় এবং দর্শকদের মধ্যেও বিগত কয়েক বছরের মধ্যে বিশাল পরিবর্তন এসেছে। চলচ্চিত্র শিল্পের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিরা বহুদিন ধরেই আইনে সংশোধনের মাধ্যমে ক্যামকর্ডিং ও পাইরেসি রোধ করার দাবি জানিয়ে আসছিল। উল্লেখ্য, গত ১৯ জানুয়ারি মুম্বাই শহরে ভারতীয় চলচ্চিত্রের জাতীয় সংগ্রহালয়ের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ক্যামকর্ডিং ও পাইরেসি রোধ করার কথা ঘোষণা করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ টোকিও-তে ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে ভারত-জাপান অংশীদারিত্বপূর্ণ সম্পর্কের বিভিন্ন দিক তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে এবং জাপানবাসীকে ধন্যবাদ জানান। প্রবাসী ভারতীয়দের তিনি দীপাবলীর অগ্রিম শুভেচ্ছা জানান। ভারতীয় সম্প্রদায়কে জাপানে ভারতের দূত বলে উল্লেখ করে শ্রী মোদী তাঁদের কাছে দেশের সঙ্গে সাংস্কৃতিক সম্পর্ক বজায় রাখার জন্য বিনিয়োগের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী ভারতে বিশেষভাবে সফল মহাকাশ গবেষণার উল্লেখ করেন এবং ভারতে তৈরি রোবোটিক পরিকাঠামোর কথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি ইলেক্ট্রনিক ও অটোমোবাইল সামগ্রী তৈরির ক্ষেত্রে ভারতকে আন্তর্জাতিক হাবে পরিণত করেছে। প্রধানমন্ত্রী নতুন ভারত গঠনে জাপানের অবদানের ওপর জোর দেন। ভারত ও জাপান সম্পর্কের উন্নয়নে অবিরাম কাজ করার জন্য তিনি ভারতীয় জনগণের প্রতি আহ্বান জানান। প্রস্তাবিতমউটিতে এই দুই দেশের মধ্যে সহযোগিতা প্রসার ও বিনিময় এবং যৌথভাবে কাজ করে যাওয়ারওপর জোর দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, এর সুবাদে পরিকাঠামো প্রসারের ক্ষেত্রে বিনিয়োগবৃদ্ধির পাশাপাশি সার্বিকভাবে দক্ষতাও বৃদ্ধি পাবে। এর ফলশ্রুতিতে দক্ষ,ব্যয়সাশ্রয়ী, নিরাপদ এবং পরিবেশ-বান্ধব এক সড়ক পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে উঠবে দুটিদেশেই। শ্রী মোদী বলেন, রামলীলা উৎসব হ’ল মিথ্যাকেপরাভূত করে সত্যের বিজয় উৎসব; অত্যাচারী ও নিপীড়ক পরাস্ত হয় সত্যের এই জয়ের মধ্যদিয়ে। আমাদের প্রত্যেকের মধ্যে যে ১০টি অশুভ প্রবৃত্তি কাজ করে, প্রতি বছরদশেরা পালনের সময়ে সেগুলির বিনাশ করা প্রয়োজন। শ্রীমোদী বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে প্রথম রুখে দাঁড়িয়েছিল রামায়ণের একটি চরিত্রজটায়ু। এমনকি, সন্ত্রাসের যারা মদতদাতা, তাদেরও কোনওভাবে রেহাই দেওয়া চলবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দিনটি আন্তর্জাতিক কন্যাসন্তানদিবস হিসেবেও উদযাপিত হচ্ছে। রেল ব্যবস্থায় নিরাপত্তার লক্ষ্যে ভারত ও ইটালির মধ্যে সহযোগিতা সম্পর্কিত যৌথ ঘোষণা ইটালিয়ান রেলওয়েজের জেনারেল ম্যানেজার তথা সিইও মিঃ রিন্যাটো ম্যাজোনসিনি রেল পর্ষদের অতিরিক্ত সদস্য (পরিকল্পনা) শ্রী বেদ পাল ভারতের আইসিসিআর এবং ইটালি সাধারণতন্ত্রের বিদেশ ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা মন্ত্রকের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বর্ষ পূর্তি উপলক্ষে স্বাক্ষরিত মউ ভারতে নিযুক্ত ইটালির রাষ্ট্রদূত মিঃ লরেঞ্জো অ্যাঞ্জেলোনি আইসিসিআর-এর মহানির্দেশক শ্রীমতী রিভা গাঙ্গুলি দাস ভারত ও ইটালির মধ্যে শক্তি ও জ্বালানি সম্পর্কিত সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত মউ কেন্দ্রীয় নতুন এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি মন্ত্রকের সচিব শ্রী আনন্দ কুমার ভারত ও ইটালির মধ্যে সাংস্কৃতিক সহযোগিতা সম্পর্কিত প্রশাসনিক চুক্তি ইটালিতে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শ্রীমতী রিনাৎ সান্ধু ইটালিয়ান ট্রেড এজেন্সি এবং ভারতের ইনভেস্ট ইন্ডিয়া-র মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগের প্রসারে সহযোগিতা সম্পর্কিত মউ ইটালিয়ান ট্রেড এজেন্সির প্রেসিডেন্ট মিঃ মিশেল স্ক্যানাভিনি বিহার ও পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির বিদ্যুৎ ঘাটতি সমস্যা নিরসনে এই কেন্দ্রটি বিশেষ ভূমিকা নেবে। আগামী ১২ জানুয়ারি, স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিনে ছত্তিশগড়ে শুরু হবে উৎসবটি। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “২০১৬-র জাতীয় যুব উৎসব নিয়ে তরুণ বন্ধুদের ভাবনা কী? আপনাদের মতামত আমার সঙ্গে বিনিময় করুন মোবাইল অ্যাপ http://nm4.indnldapp –তে। এর ফলে, রাষ্ট্রসংঘের সদস্য সব দেশ আইএসএ-র অন্তর্ভুক্ত হতে পারবে। নতুন দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৃহস্পতিবারের (৬ ডিসেম্বর) বৈঠকে ভারতের আর্থিক অভিযোগ অনুসন্ধানকারী ইউনিটের (এফআইইউ) সঙ্গে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য বিদেশি আর্থিক অভিযোগ অনুসন্ধানকারী ইউনিটগুলির মধ্যে সংশোধিত আদর্শ সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। পশ্চিমবঙ্গেরজঙ্গিপুরে সুফলভোগীদের হাতে এলপিজি সংযোগ পৌঁছে দেওয়ার কাজে রাষ্ট্রপতিজি যেমহানুভবতা দেখিয়েছেন, সেজন্য আমি তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। দু’টি দুঃখজনক ঘটনা থেকে উঠে এসে মালয়শিয়াতার দৃঢ়তা ও স্থির সংকল্পের প্রদর্শন করেছে| কুয়ালালামপুর হচ্ছে এশিয়ার পুনরুত্থানের প্রতীক এবং তা এই অঞ্চলের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের কেন্দ্র| আসিয়ান সম্প্রদায়ের জন্ম, যা এক ঐতিহাসিক মাইলফলক, এর জন্য অভিনন্দন জ্ঞাপন করছি| আমরা এমন এক সময় মিলিত হয়েছি, যখন বিশ্ব জুড়ে নানা রকম সংকট চলছে, এর মধ্যে অর্থনৈতিক অনিশ্চয়তা, রাজনৈতিক অস্থিরতা এবং নিরাপত্তার হুমকিও রয়েছে| এই কঠিন মুহুর্তে ভারত ও আসিয়ান হচ্ছে আশাবাদের দুটি উজ্জ্বল আলোক বিন্দু| ভারতে রুপান্তরের ব্যাপকতা বিপুল, অতএব, ভারতে আর্থিক ক্রিয়াকলাপের সুযোগও বিশাল| আমার কোন সন্দেহ নেই যে, আমরা আমাদের ১.৯ বিলিয়ন মানুষের সমৃদ্ধি আনয়নে বাড়তি উদ্যম যোগাতে পারব| তাছাড়া, পণ্য ও পরিষেবার পাশাপাশি বিনিয়োগ সম্পর্কিত একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষাপূর্ণ ও ভারসাম্যপূর্ণ আঞ্চলিক সর্বাত্মক আর্থিক সহযোগিতার চুক্তি প্রণয়নের জন্য আলোচনাকে আরো এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা তাকিয়ে আছি| আমরা ভারত ও আসিয়ানের মধ্যে প্রাকৃতিক ও ডিজিট্যাল যোগাযোগ প্রকল্পের জন্য ১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ ঋণদানের প্রস্তাব করছি| অতীতের মতো আমরা কম্বোডিয়া, লাওস, মায়ানমার ও ভিয়েতনামের সঙ্গে সহযোগিতার ওপর বিশেষ জোর দিচ্ছি| মান্যবরগণ, আমাদের গবেষণা ও উদ্ভাবনার উদ্যোগের মধ্য দিয়ে আমাদের অবশ্যই কিছু অভিন্ন সংকটের মোকাবিলা করতে হবে—ব্যাপক নগরায়ন ও বৃহদাকার শহর; ভবিষ্যতের জন্য দক্ষতা; খাদ্য সুরক্ষা; জল; এবং সাশ্রয়ী স্বাস্থ্য সুরক্ষা ব্যবস্থা| মান্যবরগণ, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলিতে পুনর্নবীকরণ শক্তি উৎপাদন বিষয়ক একশোটিরও বেশি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে সুযোগ নেবার প্রস্তাব দিতে পারলে আমরা আনন্দিত হব| আমি এব্যাপারে পুলকিত যে, প্রথম বারের ইন্ডিয়ান কাউন্সিল ফর কালচারাল রিলেশনস ডিস্টিঙ্গুইসড এলামনি অ্যাওয়ার্ড এবছর পাচ্ছেন আসিয়ানের মহা-সচিব মহামান্য লি লুং মিন| ভারত খুব শীঘ্রই ১০টি আসিয়ানভুক্ত দেশের সবার জন্য বৈদ্যুতিন-ভিসার সুবিধা চালু করবে| এই অঞ্চল, সমুদ্র, মহাকাশ ও সাইবার পৃথিবীতে আমাদের নিরাপত্তা ও স্থায়িত্বের ভিত্তির ওপরই আমাদের ভবিষ্যতের সমৃদ্ধি অপেক্ষা করছে| প্রথমবারের আসিয়ান-ভারত সাইবার নিরাপত্তা সম্মেলন আমরা আয়োজন করেছি ২০১৫ সালের জানুয়ারিতে| এই সম্মেলন এক্ষেত্রে আরো বৃহত্তর সহযোগিতার জন্য অন্যতম মাধ্যম হতে পারে| ভারত আশাবাদী যে, দক্ষিণ চীন সাগরে বিরোধের ক্ষেত্রে জড়িত সব দলই এই এলাকার সমঝোতা চুক্তির নিয়মনীতি মেনে চলবে এবং সর্বসম্মতিক্রমে একটা আচর বিধির দ্রুত প্রণয়নে দ্বিগুন উদ্যোগ নেবে| সামুদ্রিক নিরাপত্তা, জলদস্যুতা-প্রতিরোধ এবং মানবিক ও বিপর্যয় ঘটিত ত্রানের ক্ষেত্রে সহযোগিতায় আমাদের সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা গ্রহণ করা উচিত| মান্যবরগণ, বারবার পরিবর্তিত আমাদের এই অঞ্চল বহু অনুস্চিত অবস্থা পেরিয়েই শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধিপূর্ণ ভবিষ্যতের দিকে এগিয়েছে| তাই আমরা আশাবাদী যে, এই অঞ্চলের রূপরেখা গঠনে আসিয়ান নেতৃত্বের ভুমিকা নেবে| আমাদের সহযোগিতাকে কিভাবে আরও উন্নত করা যেতে পারে, তা নিয়ে আপনাদের চিন্তাভাবনা শোনার জন্য আমি অধীর আগ্রহের সঙ্গে রইলাম| আপনাদের ধন্যবাদ| নয়াদিল্লি, ১১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ বুধবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের প্রয়াণ বার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করলেন। “পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের প্রয়াণ দিবসে তাঁর কথা মনে পড়ছে। তাঁর অন্ত্যোদয় ও অখণ্ড মানবতাবোধের আদর্শ এখনও আমাদের পথ দেখায়”, বলেন প্রধানমন্ত্রী। “অমৃতসরের রেল দুর্ঘটনার জন্য আমি গভীরভাবে শোকাহত। এই দুঃখজনক ঘটনাটি খুবই বেদনাদায়ক। প্রিয়জনদের হারানো পরিবারগুলিকে আমি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। গুজরাটেরসৌরাষ্ট্র নর্মদা জলসেচ প্রকল্পটির সূচনা হল মঙ্গলবার। এর ফলে, শিক্ষা, চিকিৎসা, কর্মসংস্থান এবং সামাজিকঅনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগ থেকেও বঞ্চিত থাকেন তাঁরা। সুতরাং, প্রস্তাবিত বিলটিআইনে পরিণত হলে তার মূল নীতিগুলি অনুসরণে বাধ্য ও দায়বদ্ধ থাকবেন সংশ্লিষ্ট সকলপক্ষই। ১৭টি সিভিল সার্ভিস এবং তিনটি রয়্যাল ভুটান সিভিল সার্ভিসেরআধিকারিক-প্রশিক্ষার্থী উপস্থিত ছিলেন এই অনুষ্ঠানে। ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ সম্পর্কে তাঁদের নিজের নিজেরচিন্তাভাবনার কথাও তাঁরা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আধিকারিক-প্রশিক্ষার্থীদেরউপস্থাপনার জন্য তাঁদের বিশেষ প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন,তরুণ ও নবীন আধিকারিকদের এই উপস্থাপনাগুলি সম্পর্কে গভীরভাবে চিন্তাভাবনা করারজন্যতিনি ইতিমধ্যেই নির্দেশ দিয়েছেনকেন্দ্রীয় সরকারের পদস্থ আধিকারিকদের। ফাউন্ডেশনকোর্স শেষ হওয়ার আগেই পদস্থ আধিকারিকরা যাতে সে সম্পর্কে তাঁদের মতামত ওচিন্তাভাবনার কথা আধিকারিক-প্রশিক্ষার্থীদের সামনে তুলে ধরেন, সেজন্যওপ্রধানমন্ত্রী তাঁদের বিশেষভাবে আর্জি জানান। কিন্তু এখন সিভিল সার্ভিসের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল সাধারণ মানুষেরকল্যাণ ও সমৃদ্ধি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সিভিল সার্ভিসের আধিকারিকরা যদি এই লক্ষ্যও উদ্দেশ্যকে অনুসরণ করে চলেন, তাহলে প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষ এবং জনসাধারণের মধ্যে দূরত্বদূর করা যাবে। অ্যাকাডেমিরবালওয়াড়ি কেন্দ্রে গিয়ে সেখানকার শিশুদের সঙ্গেও মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী। চিত্রকলার স্রষ্ঠা ৭০ বছর বয়সী জাতীয় পুরস্কারপ্রাপক শিল্পী শ্রীমতী বাওয়া দেবী। মধুবনী চিত্রকলা ভারতের পূর্বভাগে অবস্থিত রাজ্য বিহারের মিথিলা অঞ্চলের গ্রামীণ মহিলাদের এক পরম্পরাগত চিত্রশৈলী। পুণে মেট্রো রেল প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের কাজে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা। প্রথম পর্যায়ে কাজহবে পিপড়ি চিঞ্চওয়াড় পুর এলাকা থেকে স্বর্গগেট পর্যন্ত। সুইডেন এবং যুক্তরাজ্য সফরের উদ্দেশ্যে যাত্রা শুরুর প্রাক্কালে এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন : “উত্তর ইউরোপ তথা উত্তর আটলান্টিক দেশগুলির শীর্ষ বৈঠক এবং কমনওয়েলথভুক্ত রাষ্ট্রগুলির প্রধানদের বৈঠক উপলক্ষে আগামী ১৭-২০ এপ্রিল পর্যন্ত আমি সুইডেন ও যুক্তরাজ্য সফল করব। ভারত ও সুইডেনের পরস্পরের মধ্যে রয়েছে এক উষ্ণ মৈত্রী সম্পর্ক। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং এক মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক তথা নিয়মনীতি পরিচালিত বিশ্ব শৃঙ্খলার ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছে আমাদের দু’দেশের এই অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। ভারতের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় সুইডেন হ’ল আমাদের এক মূল্যবান সহযোগী। সুইডেনের রাজা মাননীয় কার্ল ষোড়শ গুস্টাফের সঙ্গেও আমি এক সাক্ষাৎকার বৈঠকে মিলিত হব। ভারত ও সুইডেন যুক্তভাবে ফিনল্যান্ড, নরওয়ে, ডেনমার্ক এবং আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রীদের সঙ্গে ১৭ এপ্রিল তারিখে ভারত-নর্ডিক শীর্ষ বৈঠকের আয়োজন করবে। উত্তর ইউরোপ এবং উত্তর আটলান্টিকের এই দেশগুলি নির্মল প্রযুক্তি, পরিবেশগত সমস্যার সমাধান প্রচেষ্টা, বন্দর আধুনিকীকরণ, দক্ষতা বিকাশ এবং উদ্ভাবন প্রচেষ্টার শক্তিতে বিশ্বাস করে। ভারতে রূপান্তরের লক্ষ্যে আমরা যে দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করেছি তার সঙ্গে সঙ্গতি ও সাযুজ্য রয়েছে এই দেশগুলির চিন্তাভাবনার। প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মে’র আমন্ত্রণে এ মাসের ১৮ তারিখে আমি লণ্ডনে উপস্থিত থাকব। এর আগে আমি শেষবারের মতো যুক্তরাজ্য সফরে গিয়েছিলাম ২০১৫-র নভেম্বরে। এক বলিষ্ঠ ঐতিহাসিক সম্পর্কের ভিত্তিতেীক আধুনিক অংশীদারিত্বের শরিক হ’ল ভারত ও যুক্তরাজ্য। লণ্ডনে অবস্থান করার সুবাদে আমাদের ক্রমপ্রসারমান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে আরও নতুন কিছু মাত্রা যোগ করার মতো সুযোগ আমাদের সামনে উপস্থিত হবে। স্বাস্থ্য পরিচর্যা, উদ্ভাবন প্রচেষ্টা, ডিজিটাল পদ্ধতির প্রয়োগ ও ব্যবহার, বিদ্যুৎ শক্তির প্রসার, বিশুদ্ধ জ্বালানি এবং সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত ক্ষেত্রগুলিতে ভারত-যুক্তরাজ্য অংশীদারিত্বের মাত্রা আরও উন্নীত করার ওপর আমি বিশেষভাবে মনোনিবেশ করব। ‘জীবন্ত সেতু’ এই বিষয়বস্তুকে অবলম্বন করে ভারত ও যুক্তরাজ্যের সম্পর্ককে যাঁরা বহুধা প্রসারিত হতে সাহায্য করেছেন, বিভিন্ন পেশা ও বৃত্তির আরও অনেক মানুষের সঙ্গে আমার যোগাযোগের সুযোগ ঘটবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার (১৩ নভেম্বর) তাঁর বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিষয়ক উপদেষ্টা পরিষদের সদস্যদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বিজ্ঞান, প্রযুক্তির গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উদ্ভাবন ও গবেষণামূলক কাজকর্ম পরিচালনার জন্য যেসমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, সে সম্পর্কে পরিষদের সদস্যরা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, গবেষণাগার, শিল্পসংস্হা এবং বিভিন্ন সরকারি দপ্তরের মধ্যে মজবুত যোগসূত্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য পরিষদের সদস্যদের প্রতি আহ্বান জানান। শিক্ষা ও গবেষণামূলক প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে পারস্পরিক সমন্বয় ও যোগসূত্রের যে অভাব রয়েছে, তা দূর করার প্রয়োজনীয়তার ওপরও তিনি জোর দেন। বিদ্যালয় পড়ুয়াদের মধ্যে বিজ্ঞানমূলক মানসিকতার প্রসারে এবং সঠিক সময়ে তাদের চিহ্নিত করতে উপযুক্ত মঞ্চ ও ব্যবস্হা গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী এ ধরনের উদ্যোগগুলিকে জেলা ও রাজ্যস্তরীয় অটল টিঙ্কারিং ল্যাবের সঙ্গে যুক্ত করার ওপর জোর দেন। এ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী কৃষি থেকে আয় বাড়ানোর পন্হা পদ্ধতি খুঁজে বের করা, রক্তাল্পতার মতো জটিল ও জিনগত রোগের সমাধান, বর্জ্য ব্যবস্হাপনা এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত কয়েকটি ক্ষেত্রের কথা উল্লেখ করেন। বর্তমানে এই সংস্হার মোট আধিকারিক ও কর্মী সংখ্যা ১ হাজার ৪৭৭-এর মধ্যে সীমিত রয়েছে। পুর্নগঠনের এই সিদ্ধান্তের ফলে খনিজ ক্ষেত্রের সংস্কার-ও নিয়ম-নীতির পরিবর্তনে সংস্হার কাজকর্ম সম্পাদন সহজ হবে। সেইসঙ্গে, তথ্যপ্রযুক্তি ও মহাকাশ প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে খনিজ ক্ষেত্রের সামগ্রিক নিয়ন্ত্রন ও উন্নয়নে সংস্হার কার্যকারিতা বৃদ্ধি পাবে। অন্ধ্রপ্রদেশের মাননীয় রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রী; কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মীবৃন্দ; বিদেশের নৌ-বাহিনীগুলির প্রতিনিধিবৃন্দ; ভারতীয় নৌ-বাহিনীর নির্ভীক ও গর্বিত নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সকলেই; এবং মহান নগরী বিশাখাপত্তনমের সঙ্কল্পবদ্ধ জনসাধারণ। বিশাখাপত্তনম সফরের সুযোগ পেয়ে আমি খুশি। সকল ভারতবাসীর হৃদয়ে এক বিশেষ স্থান রয়েছে এই শহরটির। বিশাখাপত্তনমে আমি শেষবারের মতো এসেছিলাম ২০১৪-র অক্টোবর মাসে। সেই সময় ‘হুদহুদ’ ঘূর্ণিঝড়ে লণ্ডভণ্ড হয়ে গিয়েছিল সারা শহর। কিন্তু বিশাখাপত্তনমের অধিবাসীরা বিপর্যয়ের মুখেও ছিলেন অবিচল। মাত্র ১৪ মাসের মধ্যেই সমস্ত বাধা-বিপত্তি কাটিয়ে উঠে এই আন্তর্জাতিক নৌ-বহর প্রদর্শনীতে বিভিন্ন মহাদেশের নৌ-বাহিনীকে স্বাগত জানানোর জন্য আপনারা যেভাবে আজ প্রস্তুত তাতে এই শহরের প্রতি মানুষের শ্রদ্ধার মনোভাবই বৃদ্ধি পায়। এক বছরের কিছু আগে সমুদ্রের ভয়ঙ্কর রূপ আমরা প্রত্যক্ষ করেছিলাম। আজ এখানে সকলের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে মহাসাগরকে কিভাবে কাজে লাগানো সম্ভব সে সম্পর্কে আলোচনার জন্য আমরা যে আজ এখানে সমবেত হতে পেরেছি সেজন্য অকুন্ঠ ধন্যবাদ জানাই বিশাখাপত্তনমবাসীদের মনোবলকে। সঙ্কল্প ও সাহসিকতার জন্য শ্রদ্ধা ও সম্মান জানাই বিশাখাপত্তনম শহরকে। এই নৌ-বহর প্রদর্শনীকে প্রকৃত অর্থেই ঐতিহাসিক দিক থেকে সফল করে তুলতে ভারতীয় নৌ-বাহিনীর নারী ও পুরুষ কর্মীরা যে নিষ্ঠার পরিচয় দিচ্ছেন সেজন্য তাঁদের জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। এই আন্তর্জাতিক অনুষ্ঠানের উদ্যোগ-আয়োজনে সক্রিয় সমর্থনের জন্য আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই মুখ্যমন্ত্রী চন্দ্রবাবু নাইডুজিকে। ব্যক্তিগতভাবে বিশ্বের শ্রেষ্ঠ নৌ-শক্তিগুলির সমন্বয়ের যে ঘটনা আমি প্রত্যক্ষ করলাম তা আমার কাছে অভিজ্ঞতার দিক থেকে এক পরম প্রাপ্তি হয়ে থাকবে। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে ২০১৫-র আগস্ট মাসে ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের দ্বীপগুলির মধ্যে সহযোগিতা সম্পর্কিত দ্বিতীয় ফোরামে জয়পুরে ভারত স্বাগত জানিয়েছিল ১৪ জন রাষ্ট্রপ্রধানকে। গত শুক্রবারই গুয়াহাটিতে দ্বাদশ দক্ষিণ এশিয়ান গেমস-এ আমরা স্বাগত জানিয়েছি সবক’টি সার্ক রাষ্ট্রকে। দেশবাসীর পক্ষে আমি আপনাদের সকলকেই ধন্যবাদ জানাই আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে এখানে উপস্থিত হওয়ার জন্য। আজকের এই সমাবেশের সাফল্যের ওপর নির্ভর করে এ বছর এপ্রিল মাসে ভারত আয়োজন করতে চলেছে প্রথম আন্তর্জাতিক নৌ-তৎপরতা সম্পর্কিত শীর্ষ বৈঠক। ভারত এবং বিশ্বের অন্যান্য নৌ-শক্তিগুলির মধ্যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি ও ব্যবসায়িক সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত করা আমাদের এক বিশেষ অগ্রাধিকার। বিশ্বের মহাসাগর ও জলপথগুলি আন্তর্জাতিক দিক থেকে সকলের জন্যই। শেষবারের মতো ভারত আন্তর্জাতিক নৌ-বহর প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল মুম্বাই শহরে ২০০১ সালে। ২০১৬-র পৃথিবী কিন্তু আজ আমূল বদলে গেছে। আজকের রাজনৈতিক পরিস্থিতি যেমন চঞ্চল তেমনই জটিল হয়ে উঠছে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ। একইসঙ্গে, মহাসাগরগুলি হল আন্তর্জাতিক সমৃদ্ধির জীবনরেখা। জাতি গঠনের কাজে তা আমাদের উপহার দেয় প্রচুর অর্থনৈতিক সুযোগ ও সম্ভাবনা। আন্তর্জাতিক পণ্য বাণিজ্যের ৯০ শতাংশই হয় মহাসাগরের ওপর দিয়ে। গত ১৫ বছরে এই বাণিজ্যের পরিমাণ ৬ ট্রিলিয়ন ডলার থেকে বৃদ্ধি পেয়ে দাঁড়িয়েছে প্রায় ২০ ট্রিলিয়ন ডলারে। মহাসাগর এলাকা থেকে অর্থনৈতিক সুফল লাভের বিষয়টি নির্ভরশীল সমুদ্র এলাকায় বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় আমাদের শক্তি ও দক্ষতার ওপর। জলদস্যুতাও আমাদের সামনে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। সুনামি ও ঘূর্ণিঝড়ের মতো প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের আশঙ্কাও কম কিছু নয়। এই কারণেই আঞ্চলিক তথা বিশ্ব নিরাপত্তার স্বার্থে এক স্থায়ী ও শান্তিপূর্ণ মহাসাগরীয় পরিবেশ গড়ে তোলা বিশেষভাবে প্রয়োজন। মহাসাগরের স্বাভাবিক পরিবেশজনিত সম্পদ আহরণের লক্ষ্যেও তা একান্ত জরুরি। আধুনিক যুগের চ্যালেঞ্জগুলির আয়তন ও জটিলতা বিচার করলে আন্তর্জাতিক নৌ-স্থিতিশীলতা বজায় রাখা কোন জাতির একার পক্ষে সম্ভব নয়। সমুদ্রপথ ব্যবহারকারী সবক’টি দেশের এ এক সাধারণ লক্ষ্য ও দায়িত্বশীলতা। আর এই লক্ষ্যেই বিশ্বের নৌ-শক্তি এবং সমুদ্র এলাকায় কর্মরত সংস্থাগুলিকে কাজ করতে হবে একযোগে এক সহযোগিতার বাতাবরণের মধ্য দিয়ে। কিন্তু, প্রয়োজনবোধে যোগাযোগের স্বার্থে আন্তর্জাতিক সমুদ্রপথগুলিকে সুরক্ষিত রাখার দায়িত্বও পালন করতে হবে তাদেরই। আমাদের অর্থনীতির চালিকাশক্তি হিসেবে যদি আমরা সমুদ্র অঞ্চলকে ব্যবহার করতে চাই তবে আমাদের অবশ্যই : • শান্তি, আস্থা ও মৈত্রীর স্বার্থে এবং দ্বন্দ্ব ও সংঘাত নিরসনে সমুদ্রকে ব্যবহার করতে হবে। আমাদের মহাসাগর এলাকাকে সুরক্ষিত ও নিরাপদ রাখার লক্ষ্যে শান্তি ও সহযোগিতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে যাওয়ার অঙ্গীকারই প্রতিফলিত হয়েছে নৌ-বহর প্রদর্শনীতে বিদেশি নৌ-শক্তিগুলির এই ব্যাপক ও একত্র সমাবেশের মধ্য দিয়ে। ভারত বরাবরই ছিল একটি নৌ-কেন্দ্রিক রাষ্ট্র এবং তা থাকবে ভবিষ্যতেও। ভারতের প্রাচীন সংস্কৃত পুঁথিগুলিতে ‘চতুর্দশনম রত্ননম’, অর্থাৎ, ১৪টি রত্নের আকর হিসেবে বর্ণনা করা হয়েছে মহাসাগরকে। তিনদিক থেকে সমুদ্রবেষ্টিত ভারতের রয়েছে ৭,৫০০ কিলোমিটারেরও বেশি এলাকা বরাবর এক দীর্ঘ উপকূল রেখা। সিন্ধু সভ্যতার সময়কাল থেকেই আফ্রিকা, পশ্চিম এশিয়া, ভূমধ্যসাগর অঞ্চল, পাশ্চাত্যের বিভিন্ন দেশ, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং সুদূর প্রাচ্যের সঙ্গে ভারতের গড়ে উঠেছে সমুদ্রপথে যোগাযোগ। এই সমস্ত অঞ্চলের নৌ-শক্তিগুলি আমাদের এই বাণিজ্য প্রদর্শনীতে অংশগ্রহণ করায় আমরা আনন্দিত। ‘মেরিটাইম হেরিটেজ অফ ইন্ডিয়া’ নামে যে সচিত্র নিবন্ধের গ্রন্থটি আমি আজ এইমাত্র প্রকাশ করেছি তাতে এই গৌরবময় নৌ-ঐতিহ্যের কথা বর্ণনা করা হয়েছে। বিশ্বের প্রায় অর্ধেক কন্টেনার এবং এক-তৃতীয়াংশের মতো পণ্য চলাচল করে এই মহাসাগরের ওপর দিয়ে। আমাদের ৯০ শতাংশ বাণিজ্য এবং ৯০ শতাংশের মতো তেল আমদানির ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয় সমুদ্রপথ। ভারতের ১,২০০টি দ্বীপ অঞ্চল এবং ২.৪ মিলিয়ন বর্গ কিলোমিটার এলাকা জুড়ে বিস্তৃত আমাদের অর্থনৈতিক অঞ্চল ভারত মহাসাগরের এই গুরুত্বকেই তুলে ধরে আমাদের অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার বিভিন্ন ক্ষেত্রে। আমাদের কাছের এবং দূরের রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে কৌশলগত নৌ-সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রেও মহাসাগরের রয়েছে এক অনবদ্য ভূমিকা। গত বছর মার্চে ভারত মহাসাগর সম্পর্কে আমাদের চিন্তাভাবনার কথা আমি তুলে ধরেছিলাম মরিশাসে। নীতি সম্পর্কিত আমার অগ্রাধিকারগুলির একটি বিশেষ স্থান জুড়ে রয়েছে ভারত মহাসাগর অঞ্চল। এই কাজে ভারতের আধুনিক এবং নানা ধরনের কর্মতৎপরতার সঙ্গে যুক্ত নৌ-বাহিনী আমাদের নেতৃত্বদান করতে পারে। এই বাহিনী হল শান্তি ও কল্যাণের লক্ষ্যে এক বিশেষ শক্তি। এক ক্রমবর্ধমান রাজনৈতিক তথা অর্থনৈতিক নৌ-অংশীদারিত্ব এবং শক্তিশালী আঞ্চলিক ভিত্তিকাঠামো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য অনুসরণে আমাদের সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। সমুদ্রপথে ভারতের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির অন্বেষণ ভারতে পরিবর্তন ঘটানোর এক বৃহত্তর কর্মযজ্ঞেরই অঙ্গ বিশেষ। বিশ্ব অর্থনীতিতে আমরা এক উজ্জ্বল আলোকবিন্দু। আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক দিক থেকে আমরা স্থিতিশীলতার একটি স্তম্ভ, একটি গুরুত্বপূর্ণ বিকাশ কেন্দ্র। আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা রক্ষার লক্ষ্যকে কেন্দ্র করে ক্রমশ উঠে আসছে ভারত। দেশের আত্মবিশ্বাসী যুবসমাজের শক্তি ও উদ্যমই হল এই আশা-আকাঙ্ক্ষার উৎস। এক সপ্তাহ বাদেই আগামী ১৩ ফেব্রুয়ারি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায় মুম্বাইতে আমরা আয়োজন করতে চলেছি সাতদিনের এক আন্তর্জাতিক সম্মেলন। ‘স্কিল ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায় আমরা গড়ে তুলছি এমন কিছু প্রতিষ্ঠান যেগুলি শিল্পোদ্যোগের কাজে প্রশিক্ষণ, সহায়তা, উৎসাহ ও পরামর্শ দেবে ৮০ কোটি তরুণ ও যুবককে। আমাদের দক্ষ যুবশক্তি একুশ শতকের জাতীয় তথা আন্তর্জাতিক শ্রমশক্তির চাহিদা পূরণে এখন প্রস্তুত। ভারতের রূপান্তরের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হল ‘নীল অর্থনীতি’। ‘নীল চক্র’, অর্থাৎ, আমাদের জাতীয় পতাকা এই ‘নীল অর্থনীতি’ সম্ভাবনারই প্রতীক। এই বিষয়টি হল ভারতের উপকূল তথা দ্বীপ অঞ্চলগুলির উন্নয়নের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ, শুধুমাত্র পর্যটনের বিকাশই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য নয়। ভারতের উপকূলবর্তী রাজ্যগুলির সঙ্গে সহযোগিতার ভিত্তিতে আমি চাই ভারতের যুবসমাজের দক্ষতা বৃদ্ধির এক বিশেষ কর্মসূচি গড়ে তুলতে। পরিশেষে এই ধরনের একটি বিশাল কর্মকাণ্ডের ত্রুটিহীন উদ্যোগ-আয়োজনের জন্য আরও একবার অভিনন্দন জানাই ভারতীয় নৌ-বাহিনীকে। পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে কর্মরত আমাদের নৌ-বাহিনীর বন্ধুদের আমি শুভেচ্ছা জানাই এই বলে যে আপনাদের যাত্রার পথে বাতাস হোক অনুকূল এবং সমুদ্র থাকুক স্বাভাবিক। এছাড়াও, এই কাজগুলিকে আন্তর্জাতিক মানেও উন্নীত করা সম্ভব হবে। ভারত সৌদি আরবের সঙ্গে তার ঘনিষ্ঠ ও সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে অত্যন্ত গুরুত্ব দেয় বলে প্রধানমন্ত্রী তাঁকে জানান। সৌদি আরবের বিদেশ মন্ত্রী বলেন, তাঁদের পররাষ্ট্র নীতিতে ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে উচ্চ অগ্রাধিকার দিয়ে থাকে। তিনি সৌদি আরবের উন্নয়নে সেদেশে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের অবদানের সপ্রশংস উল্লেখ করেন। উভয় নেতাই বাণিজ্য, বিনিয়োগ, শক্তি ও সুরক্ষা সহযোগিতা প্রভৃতি বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও মজবুত করার সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। এইউপলক্ষে এক সমাবেশে শ্রী মোদী বলেন যে উত্তর গুজরাটের কৃষকরা তাঁদের দক্ষতারনিদর্শন তুলে ধরেছেন সারা বিশ্বের কাছে। সংশ্লিষ্টঅঞ্চলের কৃষকরা সেচ ব্যবস্থার মাধ্যমে কিভাবে উপকৃত হচ্ছেন সে কথাও বর্ণনা করেনপ্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কৃষকরা এখন দুগ্ধোৎপাদন ও পশুপালনের দিকে আরও বেশি করেনজর দিচ্ছেন। কারণ, তা কৃষকদের পক্ষে বিশেষ লাভজনক। নোটবাতিল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদী এবং জাল নোটের কারবারীদের শক্তিকেদুর্বল করে দেওয়ার কাজে বিশেষ সাফল্য দেখিয়েছে তাঁর সরকার। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রী আর ভেঙ্কটরমন এবং ভূতপূর্ব প্রধানমন্ত্রী শ্রী আই কে গুজরালের জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, ভারতের ইতিহাসের রূপকার হিসেবে শ্রী আর ভেঙ্কটরমন এবং শ্রী আই কে গুজরালের প্রভাব অনস্বীকার্য। এই ক্যাডার রিভিউয়ের ফলে কাজের চাহিদা অনুযায়ী সদর দপ্তর এবং অন্যান্য শাখাগুলিতে বিভিন্ন পদে নিয়োগ ও পদোন্নতির বিষয়টিকে আরও সংহত করে তোলা সম্ভব হবে ডাকবিভাগের পক্ষে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা কামরূপে (উত্তর গুয়াহাটিরাজস্ব এলাকা) একটি নতুন এইমস (এ.আই.আই.এম.এস.) স্থাপনের অনুমোদন দিল| এইপ্রকল্পের জন্য বরাদ্দ হচ্ছে ১১২৩ কোটি টাকা এবং তা প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্যসুরক্ষা যোজনার (পি.এম.এস.এস.ওয়াই) অধীনে স্থাপিত হবে| এইনতুন এইমসটি ভারত সরকারের অনুমোদনের দিন থেকে ৪৮ মাসের মধ্যে নির্মিত হবে| যারমধ্যে রয়েছে ১৫ মাসের নির্মাণ-পূর্ব সময়, ৩০ মাসের নির্মাণ সময় এবং তিন মাসেরপরীক্ষা-নিরীক্ষা ও সম্পূর্ণ সজ্জা সমাপ্ত (স্টেবিলাইজেশন/কমিশনিং) করার সময়| প্রেক্ষাপট: বইটি আনুষ্ঠানিকভাবেপ্রকাশ করেন রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। দু’দেশের মধ্যে স্বাস্থ্য সম্পর্কিতএই বিষয়টিতে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের ফলে যে সমস্ত রোগী অঙ্গের বৈকল্যজনিত কারণেকষ্ট পাচ্ছেন তাঁদের চিকিৎসা ও অস্ত্রপচারের ক্ষেত্রে বিশেষ সুবিধা হবে বলে মনেকরা হচ্ছে। বেদানুসারে, প্রকৃতির সুফলগুলি অবশ্যই গ্রহণযোগ্য, কিন্তু প্রকৃতিকে শোষণ করা নীতি ও নিয়ম বিরুদ্ধ। কিন্তু গত ৪০ বছর ধরে সীমান্ত সন্ত্রাসের শিকার হয়ে এসেছে ভারত। শ্রী মোদী বলেন, মানবতাবাদী সমস্ত শক্তির উচিৎ জোটবদ্ধভাবে সন্ত্রাসের হাত থেকে বিশ্বকে রক্ষা করা। তিনি আক্ষেপ করে বলেন যে গত ৪০ বছরে সন্ত্রাসের প্রশ্নে কোন চুক্তি বা মতৈক্যে পৌঁছতে পারেনি রাষ্ট্রসঙ্ঘ। এই বিষয়টি ঐ বিশেষ মঞ্চে উত্থাপনের যে প্রস্তাব রেখেছেন প্রেসিডেন্ট পুতিন, তাকে আন্তরিকভাবে সমর্থন জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। অস্ত্র নির্মাণ বা কারেন্সি নোট ছাপানোর ক্ষমতা যে সন্ত্রাসবাদীদের নেই একথার উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, কয়েকটি দেশের কাছ থেকে জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদীরা এগুলি সংগ্রহ করে থাকে। মানবজাতির পক্ষে ভয়ঙ্কর এই পরিস্থিতি সম্পর্কে সমগ্র বিশ্ব যেদিন সহমত হবে, একমাত্র সেদিনই সন্ত্রাসকে পরাস্ত করা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। তিনি বলেন, উদার তথা মুক্ত অর্থনীতিতে ভারত বিশ্বাসী। হায়দরাবাদে এক ছাত্রের সাম্প্রতিক আত্মহত্যার ঘটনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৃত ছাত্রের পরিবারের যন্ত্রণা তিনি বুঝতে ও অনুভব করতে পারছেন। তিনি বলেন, দেশে ফেরার সংকল্প নিয়ে ডঃ আম্বেদকর ভারতে প্রত্যাবর্তন করেন এবং সমাজের দুর্বলতর শ্রেণীর কল্যাণে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেন। শ্রীলঙ্কারবিদেশ মন্ত্রী মিঃ তিলক মারাপানা শনিবার এখানে সাক্ষাৎ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। তিনদিনের এক দ্বিপাক্ষিক সফরে তিনি ভারতে এসেছেন। শ্রীলঙ্কারনতুন বিদেশ মন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণ করার জন্য মিঃ তিলক মারাপানাকে অভিনন্দনজানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘আন্তর্জাতিক ভেসক দিবস’উপলক্ষে এ বছরের মে মাসে তাঁরসফল শ্রীলঙ্কা সফরেরও প্রসঙ্গত স্মৃতিচারণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীবলেন, শ্রীলঙ্কার সঙ্গে সম্পর্ককে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে ভারত। দুটিদেশের মধ্যেই রয়েছে এক গভীর এবং প্রসারিত সম্পর্কের বাতাবরণ । বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট ডঃ জিম ইয়ং কিম নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে আজ সাক্ষাৎ করলেন। এই বৈঠকের সময় প্রধানমন্ত্রী ভারতের প্রতি বিশেষত, স্মার্টসিটি, গঙ্গা পুনরুজ্জীবন, কর্মমুখী দক্ষতা উন্নয়ন, স্বচ্ছ ভারত, সকলের জন্য বিদ্যুৎ প্রভৃতি অগ্রাধিকারমূলক ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাঙ্কের নিরন্তর সমর্থনের জন্য এই বিশ্ব সংস্থার প্রশংসা করেন। ডঃ কিম বলেন, এইসব কর্মসূচিতে যে উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্যমাত্রা ধার্য হয়েছে, তা তাঁকে মুগ্ধ করেছে। ভারতের মতো যেসব দেশ পরিবেশগতভাবে সুস্থায়ী পথে চলার চেষ্টা করছে তাদের জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত বিষয়ে অর্থ যোগানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব দেন। ডঃ কিম বিশ্ব ব্যাঙ্ক এ ব্যাপারে অতি সক্রিয় ভূমিকা নেবে এবং এই কর্মসূচিকে পুরোপুরি সমর্থন জানাবে বলেও প্রধানমন্ত্রীকে আশ্বাস দেন। এ প্রসঙ্গে ডঃ কিম বাণিজ্যের উদ্যোগকে সরল করে তোলা, বিশেষ করে, উপকরণগত ক্ষেত্রে এই লক্ষ্যে ভারতের দ্রুত অগ্রগতির প্রশংসা করেন। বিহারের মোকামায় নমামি গঙ্গেকর্মসূচির আওতায় শনিবার চারটি নিকাশি প্রকল্প এবং চারটি মহাসড়ক প্রকল্পেরশিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মোট ৩৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এইপ্রকল্পগুলি রূপায়িত হবে। এই উপলক্ষে এক বিশালজনসমাবেশে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রামধারী সিং দিনকর জি-র মতো একজন মহানকবির নিবিড় স্মৃতি বিজড়িত একটি স্হানে আসার সুযোগ পেয়ে তিনি আনন্দিত। বিহারেরউন্নয়ন ও অগ্রগতিতে কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্যসরকার সম্ভাব্য সকল রকম পদক্ষেপগ্রহণ করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন রাজ্যবাসীকে। শ্রী মোদী বলেন, জনসাধারণেরআশা-আকাঙ্খার বাস্তবায়নে সরকার নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যে প্রকল্পগুলিরশিলান্যাস আজ অনুষ্ঠিত হচ্ছে তা বিহারের উন্নয়নে এক বিশেষ জোয়ার এনে দেবে বলে মনেকরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সড়কনির্মাণ প্রকল্পগুলির রূপায়ণে গতি সঞ্চারের দিকে তাঁর সরকার বিশেষভাবে দৃষ্টিদিয়েছে। নমামি গঙ্গে-এর আওতায় যে কর্মসূচিগুলি রূপায়িত হচ্ছে তা গঙ্গানদীকেদূষণমুক্ত রাখতে সাহায্য করবে বলে মনে করেন তিনি। সম্প্রতি চালু হওয়াঅন্ত্যোদয় এক্সপ্রেস প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, সরকারি এই পদক্ষেপে বিহার সহ পূর্বভারতের সঙ্গে দেশের অন্যান্য অংশের যোগাযোগ আরও নিবিড় হয়ে উঠবে। অন্যদিকে যে চারটি নিকাশিপ্রকল্পের শনিবার প্রধানমন্ত্রী শিলান্যাস করেন সেগুলি হল বেউর-এ জল ও বর্জ্য শোধনপ্রকল্প, বেউর-এ নিকাশি ব্যবস্হার নেটওয়ার্কের সঙ্গে এক নতুন নিকাশি প্রকল্প যুক্তকরা, কারমালিচক-এ বর্জ্য শোধন প্রকল্প এবং সৈয়দপুরে জল ও বর্জ্য নিকাশি ব্যবস্হা। পরবর্তী তিন বছরে বস্ত্র ও পোশাক শিল্পে ১ কোটি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যে সরকার যে সংস্কারমূলক কাজকর্মের কথা ঘোষণা করে তারই প্রেক্ষিতে এই প্যাকেজ অনুমোদনের প্রস্তাবটি মন্ত্রিসভার বৈঠকে সর্বসম্মতিক্রমে গৃহীত হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার (২৪শে জানুয়ারি) লোককল্যাণ মার্গে তাঁর বাসভবনে ট্যাবলো শিল্পী, আদিবাসী অতিথি, এনসিসি ক্যাডেট এবং এনএসএস স্বেচ্ছাসেবকদের সঙ্গে মিলিত হন। সাধারণতন্ত্র দিবসের শোভাযাত্রা ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য অনুষ্ঠানে তাঁদের অংশগ্রহণের জন্য শিল্পী ও অংশগ্রহণকারীদের অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটা এঁদের জীবনে এক দারুণ সুযোগ। সমগ্র দেশ এঁদের কাছ থেকে অনুপ্রেরণা পায়। দৈনন্দিন জীবনে অনুশাসন ও শৃঙ্খলার গুরুত্বের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, শৃঙ্খলা জাতীয় সমর শিক্ষার্থী বাহিনীর (এনসিসি)এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তিনি আরও বলেন, দেশবাসীকে তাঁদের নাগরিক কর্তব্যগুলি সম্বন্ধে সর্বদাই সজাগ থাকতে হবে। সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে তাঁদের সচেতনতাই ভারতকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাবে। ভদ্রমহোদয় ও ভদ্রমহিলাগণ, আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে অনেক শুভেচ্ছা। হিমালয়ের পাদদেশে সুন্দর ও মনোরম শহর দেরাদুনে আজ সকালে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপন অনুষ্ঠানে সমাজের নানা শ্রেণীর হাজার হাজার মানুষের সঙ্গে সামিল হতে পেরে আমি আনন্দিত। সারা বিশ্ব জুড়ে বিগত কয়েকদিন ধরে যোগ দিবস উদযাপন উপলক্ষে সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণের ছবি আমি দেখেছি। নিঃসন্দেহে বিগত তিন বছরের মধ্যেই এই কর্মসূচি সারা বিশ্ব জুড়ে গণ-আন্দোলনে পরিণত হয়েছে। বিশ্বের বহু দেশে যোগচর্চা সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের অভিন্ন অংশ হয়ে উঠেছে। যোগ দিবস উদযাপনের পাশাপাশি, এর প্রভাব বহু দূর পর্যন্ত প্রসারিত হয়েছে। ভারতে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপনের ক্ষেত্রে আমি তিনটি ভিন্ন বিষয় উপলব্ধি করেছি। আমি নিশ্চিত, এই ধরণের ভিন্ন ভিন্ন উপলব্ধি অন্যান্য দেশেও হয়ে থাকে। দ্বিতীয়ত, যাঁরা ইতিমধ্যেই যোগ’কে জীবনের অভিন্ন অংশ হিসাবে গ্রহণ করেছেন, তাঁদের কাছেও যোগ দিবস উদযাপন অনুষ্ঠান নিজেদেরকে পুনরায় অভীষ্ট লক্ষ্য পূরণে উৎসর্গ করার মুহূর্ত হয়ে উঠেছে। তৃতীয় বিষয় হ’ল, যোগের উপকারিতার কথা ছড়িয়ে দেওয়া। হাজার হাজার ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান, যারা যোগ থেকে ইতিমধ্যেই লাভবান হয়েছেন, তাঁদের কর্তব্য সেই সমস্ত মানুষের কাছে যাওয়া যাঁরা এখনও যোগের সুফল উপলব্ধি করতে পারেননি। এইভাবে, আন্তর্জাতিক যোগ দিবস বিশ্বের অনেকের কাছেই উৎসব হিসাবে উদযাপিত হবে। যোগ শব্দের অর্থ হ’ল – ‘ঐক্যবদ্ধ করা বা হওয়া’। তাই, যোগের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস নিহিত রয়েছে, তা আমাকে আশাবাদী করে তোলে। আমি আশা করি, যোগ সমগ্র বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ রাখার মাধ্যম হয়ে উঠতে পারে। এই নেচার কিওর সেন্টার উদ্বোধনের জন্য আপনি আন্তর্জাতিক যোগ দিবসকে বেছে নেওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমি আশা করি, এই কেন্দ্রটি তার সমস্ত কর্মসূচি ও উদ্যোগে যোগের উপাদানগুলিকে ব্যাপকভাবে অঙ্গীভূত করার চেষ্টা করবে। যোগ ও আয়ুর্বেদের মতো ঐতিহ্যবাহী ভারতীয় জ্ঞানের পদ্ধতিগুলি আমাদের স্বাস্থ্যবান রাখতে সাহায্য করে। দেহ ও মনের সহজাত দুর্বলতাগুলি থেকে মুক্তি দিতে যোগ ও আয়ুর্বেদ সাহায্য করে। প্রাচীন এই জ্ঞান-পদ্ধতিগুলি প্রত্যেককে সম্মান ও শ্রদ্ধা করে থাকে। আধুনিক জীবনযাপনের বিরূপ প্রভাব দেহ ও মনের ওপর পড়ে। দুর্ভাগ্যজনকভাবে প্রচলিত চিকিৎসা ব্যবস্থায় রোগ-প্রতিরোধের চেয়ে আরোগ্যলাভে বেশি জোর দেওয়া হয়। একথা নকচ করার কোনও উপায় নেই যে, বর্তমান সময়ের বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি দূর করতে আমাদের প্রচলিত ওষুধপত্রের প্রয়োজন। কিন্তু এটাও ঘটনা যে, স্বাস্থ্য সমস্যা দূর করার ক্ষেত্রে এমন কিছু ফাঁক-ফোকর থেকে যাচ্ছে, যার ওপর নজরই দেওয়া হচ্ছে না। সমগ্র বিশ্বের স্বাস্থ্য-বিশেষজ্ঞরাও এখন একথা স্বীকার করেছেন যে, যোগ ও আয়ুর্বেদের মতো প্রাচীন চিকিৎসা পদ্ধতি সমসাময়িক চিকিৎসা ব্যবস্থার পরিপূরক হয়ে উঠতে পারে। এই ঐতিহাসিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগী কল্যাণ ও রোগ প্রতিরোধে গুরুত্ব দেওয়া হয়। এই পদ্ধতি গ্রহণ করলে ব্যক্তি তথা সমাজের সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণ বৃদ্ধি পাবে। কিছু মানুষের ভিন্ন ধারণা সত্ত্বেও একথা বলা যায় যে, যোগ কেবল ব্যায়াম ও দৈহিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ সঞ্চালনের মধ্যেই সীমিত নয়। মন, দেহ ও মানসিকতার গভীরে প্রোথিত রয়েছে যোগ। যোগ নিজেকে আরও ভালোভাবে বোঝার সুযোগ করে দেয়। আমি সবসময় বিশ্বাস করে এসেছি যে, যোগের কোনও ধর্ম হয় না। আধুনিক যোগচর্চায় প্রায়শই প্রাচীন জ্ঞানের বিভিন্ন উপাদান লক্ষ্য করা যায়। এই সমস্ত উপাদানগুলির মধ্যে রয়েছে – নৈতিক ও শাস্ত্রগত আদর্শ, শরীরকে সুস্থ রাখতে বিভিন্ন ভাবভঙ্গি, আধ্যাত্মিক আদর্শ, গুরুর নির্দেশ ও নিয়মাবলী, মন্ত্রোচ্চারণ, শ্বাস ত্যাগ ও একাগ্রতার মধ্যে মস্তিষ্ককে স্থির রাখা। ব্যক্তিবিশেষের জীবনযাপন পরিবর্তনে যোগচর্চায় গুরুত্ব দেওয়া হয়, যাতে জীবনশৈলীর সঙ্গে জড়িত সমস্যাগুলি সহজেই প্রতিরোধ ও সমাধান করা যায়। এমন বিশ্বাসও রয়েছে যে, নির্দিষ্ট কয়েকটি যোগাভ্যাস ও প্রাণায়ামের মাধ্যমে বেশ কিছু অসুখ-বিসুখ নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। আধুনিক বিজ্ঞান এখন এ বিষয়ে প্রামাণ্য সাক্ষ্য অনুসন্ধানে উদ্যোগী হয়েছে। বিজ্ঞানও একথা স্বীকার করেছে যে, যোগচর্চার মাধ্যমে দেহের বহু অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ, যেমন – হৃদযন্ত্র, মস্তিষ্ক ও অন্তর্গ্রন্থির নিত্যনৈমিত্তিক কাজকর্ম ও পরিচালন প্রক্রিয়া নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব। আজ পশ্চিমী দেশগুলিতে যোগের প্রতি আগ্রহ ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। একথা বলা অতিরঞ্জিত হবে না যে, পশ্চিমী দুনিয়ায় যোগ ব্যাপকভাবে সমাদৃত হয়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপের একাধিক আধুনিক চিকিৎসা প্রতিষ্ঠান বিভিন্ন রোগের বিকল্প বা আনুষঙ্গিক চিকিৎসা-পদ্ধতি হিসাবে যোগকে গ্রহণ করেছে। দেরীতে হলেও যোগচর্চা সম্বন্ধে বহু গবেষণা শুরু হয়েছে। ভারত সরকারও জনস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে প্রামাণ্য সাক্ষ্য-ভিত্তিক পরম্পরাগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা ব্যবস্থা রূপায়ণে অঙ্গিকারবদ্ধ। অ-সংক্রমিত রোগগুলির প্রতিরোধ ও নিয়ন্ত্রণে দেশব্যাপী কর্মসূচি আমরা শুরু করেছি। বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম জনসংখ্যার দেশ ভারত। এটা গুরুত্বপূর্ণ যে, এই রোগী কল্যাণ কেন্দ্রটির উদ্দেশ্য জীবনব্যাপী কল্যাণসাধন করা। আমি একথাও স্বীকার করি যে, বৈজ্ঞানিক পদক্ষেপের প্রতি আস্থা ও প্রত্যয় সহজাত। এ ধরণের উদ্দেশ্য নিয়ে এই কেন্দ্রটি রোগী কল্যাণে লক্ষ্যণীয় অবদান রাখবে এবং যোগচর্চার উপকারিতার কথা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আরও বেশি সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেবে। এই উদ্যোগের জন্য আপনাদের সকলকে আমরা শুভ কামনা জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এর লক্ষ্যে সবচেয়ে বড় অনুপ্রেরণা হলেন মহাত্মা গান্ধী স্বয়ং। গতকাল ইন্ডিয়া টু ডে গোষ্ঠী আয়োজিত সাফাইগিরি বৈঠক ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠান, ২০১৫-তে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছ ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে গত এক বছরে বহু মানুষ তাঁদের অবদানের স্বাক্ষর রেখেছেন। এ বিষয়ে বৈদ্যুতিন প্রচার মাধ্যমের ইতিবাচক ভূমিকার সপ্রশংস উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বচ্ছতা তথা পরিচ্ছন্নতা একটি অভ্যাস। একবার এই অভ্যাস রপ্ত করতে পারলে কোনও মানুষই অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ বরাদাস্ত করতে পারে না। তিনি বলেন, ব্যক্তিগত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে ভারতের নাগরিকরা খুবই সচেতন, কিন্তু সামাজিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার বিষয়ে তাঁরা উদাসীন। এই মানসিকতার পরিবর্তন প্রয়োজন বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। অস্বাস্থ্যকর পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে ভারতে প্রত্যেক দিন গড়ে ১ হাজার শিশুর মৃত্যু ঘটে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। ১২৫ কোটি ভারতবাসী যদি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেন যে ভারত’কে পরিচ্ছন্ন করে গড়ে তোলা হবে, তা হলে তা সম্ভব হবে নিশ্চিত রূপেই। অনুষ্ঠানে পুরস্কার বিজয়ীদের বিশেষ প্রচেষ্টা ও অবদানের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের এই কাজ অন্যান্য বহু মানুষের কাছে এক অনুপ্রেরণা হয়ে থাকবে। সিকিউরিটিজঅ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি)-র সঙ্গে জিব্রাল্টারের ফিনান্সিয়ালসার্ভিস কমিশন (এফএসসি)-এর পারস্পরিক সহযোগিতা ও কারিগরি সহায়তার লক্ষ্যে এক মউস্বাক্ষরের প্রস্তাব বুধবার অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরনেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এইদুটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সম্পর্ক মউ স্বাক্ষরের ফলে আরওপ্রসার লাভ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। দু’দেশের শেয়ার বাজারের প্রসার ও বিকাশেরউপযোগী পরিস্থিতি গড়ে তুলতেও মউ স্বাক্ষরের ঘটনা বিশেষভাবে সাহায্য করবে। স্পেকট্রামের বিক্রয় কেবল দুই অ্যাকসেস সার্ভিস প্রোভাইডারের মধ্যেই অনুমোদিত হবে আর এক্ষেত্রে বিক্রয়কারীর কাছ থেকে ক্রেতাকে স্পেকট্রাম ব্যবহারের সম্পূর্ণ স্বত্ব হস্তান্তর-ই কেবল মঞ্জুর হবে। স্পেকট্রাম বিক্রয় স্পেকট্রাম বন্টনের মূল বৈধতার মেয়াদে কোনরকম পরিবর্তন ঘটাবে না। কোন লাইসেন্সিকে স্পেকট্রাম বিক্রির অনুমতি দেওয়া হবে না যদি এটা প্রমাণিত হয় যে ঐ লাইসেন্সি লাইসেন্সের শর্তাবলী ভঙ্গ করেছে এবং লাইসেন্স প্রদানকারী ঐ লাইসেন্স বাতিল করার নির্দেশ দিয়েছে। বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মবার্ষিকীর দিনটিতে এই মঞ্চচালু হলে কৃষকরা তাদের উৎপাদিত পণ্যের জন্য আরও ভালো দাম পাবেন। আগামী ৩১ডিসেম্বর, ২০১৭ এবং ১ জানুয়ারি, ২০১৮ তারিখে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দুটিগুরুত্বপূর্ণ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ৩১ ডিসেম্বরতিনি কেরলের ভারকলায় শিবগিরি মঠে ৮৫তম শিবগিরি পূণ্যযাত্রা সমারোহের উদ্বোধনউপলক্ষে ভাষণ দেবেন ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। শিবগিরি হল ভারতের এক মহানসন্তপুরুষ তথা সমাজ সংস্কারক শ্রী নারায়ণ গুরুর পবিত্র বাসভূমি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বারাণসী সংসদীয় কেন্দ্রের গ্রামপ্রধানদের নতুন দিল্লিতে তাঁর বাসভবনে স্বাগত জানান। এঁরা হলেন বারাণসীর সংসদীয় আসন থেকে আসা তৃতীয় গোষ্ঠী, যাঁরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। তিনি আরও বলেন, “এটা নতুন ভারত – এই কথা আমাদের নিকট প্রতিবেশী দেশটি ভুলে গেছে। প্রতিরক্ষা করিডরের শিলান্যাস করে প্রধানমন্ত্রী মন্ত্রী বলেন, ঝাঁসি – আগ্রা অংশে গড়ে উঠতে চলা প্রতিরক্ষা করিডরটি এই অঞ্চলের যুবসম্প্রদায়ের জন্য প্রত্যক্ষ ও অপ্রত্যক্ষ কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রস্তাবিত এই করিডরটিতে বহু দেশি-বিদেশি প্রতিরক্ষা সংস্থা বিনিয়োগ করবে। এমনকি, এই অঞ্চলের কর্মী বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণ প্রদানের ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। প্রতিরক্ষা সাজ-সরঞ্জাম উৎপাদন ক্ষেত্রে এই প্রকল্পটি ভারতকে আত্মনির্ভর হয়ে উঠতে সাহায্য করবে বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। বুন্দেলখন্ডের গ্রামীণ এলাকার জন্য প্রধানমন্ত্রী পাইপ লাইন বাহিত জল সরবরাহ প্রকল্পেরও শিলান্যাস করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পাইল লাইন বাহিত জল সরবরাহ প্রকল্পটি খরা প্রবণ এই অঞ্চলের জীবনরেখা হয়ে উঠবে। অম্রুত প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী ঝাঁসি শহরে পানীয় জল সরবরাহ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের শিলান্যাস করেন। তিনি জানান, ঝাঁসি ও সংলগ্ন গ্রামগুলিতে পানীয় জলের চাহিদা পূরণে বেতওয়া নদীর জল ব্যবহারের লক্ষ্যে ৬০০ কোটি টাকার একটি প্রকল্প গড়ে তোলা হচ্ছে। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী ৪২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝাঁসি – মানিকপুর এবং ভীমসেন – খাইরার রেল লাইন ডবল করার কাজের সূচনা করেন এবং ঝাঁসিতে রেল কামরার রক্ষণা-বেক্ষণ ওয়ার্কশপের শিলান্যাস করেন। প্রধানমন্ত্রী ২৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝাঁসি – খাইরার শাখার বৈদ্যুতিকীকরণ কাজের সূচনা করেন। রেল লাইন বৈদ্যুতিকীকরণের এই প্রকল্প রূপায়িত হলে বুন্দেলখন্ড অঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে এবং সংশ্লিষ্ট এলাকার সার্বিক উন্নয়ন আরও ত্বরান্বিত হবে। পাহাড়ি বাঁধ আধুনিকীকরণ প্রকল্পেরও শ্রী মোদী উদ্বোধন করেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান যোজনায় কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রায় সাড়ে সাত লক্ষ কোটি টাকা সরাসরি জমা দেওয়া হবে। প্রকল্পের সুযোগ, আওতা ও প্রসার আরও বৃদ্ধির জন্যমন্ত্রিসভা নিম্নলিখিত বিষয়ের অনুমোদন দিয়েছে: (১) সি.এল.এস.এস.-এর এম.আই.জি.-ওয়ান পর্যায়ের কার্পেটএলাকা বর্তমানের ৯০ বর্গমিটার থেকে বৃদ্ধি হয়ে ১২০ বর্গমিটার পর্যন্ত হচ্ছে এবংসি.এল.এস.এস.-এর এম.জি.আই.-টু পর্যায়ের কার্পেট এলাকা বর্তমানের ১১০ বর্গমিটারথেকে বেড়ে গিয়ে ১৫০ বর্গমিটার পর্যন্ত হচ্ছে; এবং প্রেক্ষাপট: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি আজ তাঁর চন্ডীগড় সফরের সময় নাগরিকদের অসুবিধার জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেছেন, ‘চন্ডীগড়ের নাগরিকদের যেসব অসুবিধা হয়েছে, বিশেষ করে আমার সফরের জন্য স্কুল বন্ধ রাখায় যে সমস্যা হয়েছে তার জন্য দুঃখ প্রকাশ করছি। এটা পুরোটাই পরিহার করা যেতো। সিঙ্গাপুর সফরের আগে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি। “আসিয়ান-ভারত এবং পূর্ব এশিয়া শিখর সম্মেলনে যোগ দিতে আমি ১৪-১৫ই নভেম্বর সিঙ্গাপুর সফরে যাব। এছাড়াও, আমি আঞ্চলিক সুসংহত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব শীর্ষক বৈঠকে অংশ নেব। এই শিখর বৈঠকগুলিতে আমার যোগদান আসিয়ান সদস্য দেশগুলি সহ ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের বিস্তীর্ণ এলাকার সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে আমাদের নিরন্তর দায়বদ্ধতার দিকগুলিকেই প্রতিফলিত করে। আসিয়ান সহ পূর্ব এশিয়া শিখর সম্মেলনে যোগাদানকারী নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও আমার আলাপ-আলোচনার ব্যাপারে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। ১৪ই নভেম্বর সিঙ্গাপুর ফিনটেক উৎসবে সরকারি প্রধান হিসাবে আমি মূল ভাষণ দেওয়ার সম্মান লাভ করব। আর্থিক প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশ্বের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠান হিসাবে এই উৎসব দ্রুত আর্থিক বিকাশশীল বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারতের ক্ষমতা প্রদর্শনের শুধুমাত্র উপযুক্ত মঞ্চই নয়, সেই সঙ্গে উদ্ভাবন ও বিকাশের অগ্রগতির জন্য বিশ্ব অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও এক আদর্শ কেন্দ্র। সিঙ্গাপুর সফরকালে ভারত – সিঙ্গাপুর যৌথভাবে আয়োজিত হ্যাকাথন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারী ও বিজয়ীদের সঙ্গে আমি মতবিনিময়ের সুযোগ পাব। এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, যথাযথ অনুপ্রেরণা ও সঠিক দিশায় পরিচালনার অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তোলা গেলে মানবজাতি যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে, তার উপযুক্ত সমাধানে সমগ্র বিশ্বকে নেতৃত্ব দেওয়ার সক্ষমতা আমাদের যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে রয়েছে। আসিয়ান ও পূর্ব এশিয়া শিখর সম্মেলনে যোগদানকারী দেশগুলির সঙ্গে আমাদের ক্রমবর্ধমান অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে আমার এই সিঙ্গাপুর সফর আমাদের সম্পর্কে নতুন করে গতি সঞ্চার করবে বলে আমার দৃঢ় বিশ্বাস। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দলিতসহ প্রান্তিক মানুষদের জন্য উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়টি রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারেরবর্তমান কর্মপরিকল্পনার কেন্দ্রবিন্দুতে। তানজানিয়া এবং আফ্রিকার অন্য দেশগুলির প্রায় ৩০ জন ‘সৌর-মায়ের’ একটি গোষ্ঠী সৌর লন্ঠন এবং ঘরোয়া আলোক ব্যবস্হা তৈরী, মেরামত এবং রক্ষনাবেক্ষনে তাদের দক্ষতার নমুনা প্রদর্শন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে। তারা তাদের মধু নিষ্কাশণ এবং সেলাই-এর নমুনাও প্রদর্শন করেন এবং ‘উই শ্যাল ওভারকাম’ গানটি গেয়ে শোনান। রাজস্হানের তিলোনিয়ার বেয়ারফুট কলেজ আফ্রিকার গ্রামের মহিলাদের সৌর ইঞ্জিনিয়ারের ভূমিকায় তুলে ধরতে সৌর লন্ঠন এবং ঘরোয়া আলোক ব্যবস্হা তৈরী, মেরামত এবং রক্ষনাবেক্ষনে তাদের প্রশিক্ষণ দিয়ে চলেছে ভারত সরকারের সহায়তাপুষ্ট প্রকল্পে। তারা তানজানিয়ার জাঞ্জিবার দ্বীপে খালি পায়ে থাকা মহিলাদের জন্য বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ মহাবিদ্যালয় স্হাপন করেছেন তানজানিয়া এবং আফ্রিকার অন্যান্য দেশে থাকা মহিলাদের জন্য যাতে তাদের সৌরবিদ্যুৎসংক্রান্ত দক্ষতা অর্জনের প্রশিক্ষণ দিয়ে সৌরবিদ্যুৎ সরঞ্জাম প্রদান করা যায়। এই কলেজগুলি মৌমাছি পালন, জামাকাপড় সেলাই প্রভৃতি ক্ষেত্রেও উদ্যোগমূলক দক্ষতাকে সহায়তা করে থাকে। এইকর্তৃপক্ষের প্রধান হবেন ভারত সরকারের সচিব পর্যায়ের একজন বরিষ্ঠ আধিকারিক।এছাড়াও, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির চারজন টেকনিক্যাল সদস্য এই কমিটিতে থাকবেন।জিএসটি হার হ্রাসের ফলে বিভিন্ন পণ্য এবং পরিষেবার দাম কমার সুবিধা যাতে গ্রাহকদেরকাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যে সম্ভাব্য সব ধরনের পদক্ষেপ নিতে যে সরকারবদ্ধপরিকর, এর মাধ্যমে তা সুস্পষ্ট হয়েছে। স্মরণকরা যেতে পারে যে, ২০১৭-র ১৪ নভেম্বর মধ্যরাত থেকে ১৭৮টি পণ্যের জিএসটি হার ২৮শতাংশ থেকে কমিয়ে ১৮ শতাংশ করা হয়েছে। ২৮ শতাংশ হারে জিএসটি যুক্ত পণ্যের সংখ্যাবর্তমানে মাত্র ৫০টি। অনুরূপভাবে, এক বিরাট সংখ্যক পণ্যের জিএসটি ১৮ শতাংশ থেকেকমিয়ে ১২ শতাংশ এবং কোন কোন ক্ষেত্রে আরওকমিয়ে সম্পূর্ণ কর ছাড় দেওয়া হয়েছে। জিএসটিআইনে যে মুনাফা বিরোধীতার পদক্ষেপের কথা বলা হয়েছে তাতে সমস্ত ধরনের পণ্যদ্রব্যেরওপর জিএসটি-র কম হার এবং ইনপুট ট্যাক্স ক্রেডিট-এর পূর্ণ সুবিধা যাতে গ্রাহকদেরকাছে পৌঁছনো যায়, তার জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার কথা রয়েছে। যদিকোন গ্রাহক মনে করেন যে, কোন পণ্য বা পরিষেবার ওপর জিএসটি কমানোর সুবিধা তাঁরাপাচ্ছেন না, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট রাজ্যের পর্যালোচনা কমিটির কাছে তাঁরা লিখিতভাবেআবেদন জানাতে পারবেন। তবে, সর্বভারতীয় ক্ষেত্রে কোন বিশেষ বহুল প্রচলিত পণ্যের ওপরমুনাফা সংক্রান্ত ঘটনার জন্য গ্রাহকরা সরাসরি স্থায়ী কমিটির কাছে আবেদন জানাতেপারবেন। জাতীয়মুনাফা বিরোধী কর্তৃপক্ষ যদি মনে করে যে, মুনাফা বিরোধী পদক্ষেপ গ্রহণ করাপ্রয়োজন, সেক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট সরবরাহকারী বা ব্যবসায়ীদের জিনিসপত্রের দাম কমানোরনির্দেশ দেওয়ার অথবা পণ্য বা পরিষেবার বর্ধিত দাম সুদ সহ গ্রাহকদের ফেরৎ দেওয়ারনির্দেশ দিতে পারেন। যে সব ক্ষেত্রে বেআইনি মুনাফা গ্রাহকদের কাছে পৌঁছে দেওয়াযাবে না, সেক্ষেত্রে গ্রাহক কল্যাণ তহবিলে তা জমা রাখার জন্য নির্দেশ দেওয়া যেতেপারে। কোন বিশেষ ক্ষেত্রে, মুনাফা বিরোধী কর্তৃপক্ষ দোষী ব্যবসায়িক সংস্থার ওপরশাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিতে পারবে এবং জিএসটি-র আওতায় সংশ্লিষ্ট সংস্থাররেজিস্ট্রেশন বাতিল করার ক্ষমতাও তাদের থাকবে। ২০১৫’র মার্চ মাসে ভারত ও কাতারের মধ্যে স্বাক্ষরিত মউ সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে বিস্তারিতভাবে অবহিত করা হয় বুধবার এখানে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। যোগাযোগ এবং তথ্য প্রযুক্তির ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বিনিময়ের লক্ষ্যে ভারত ও কাতার স্বাক্ষরিত মউটিকে কার্যকর করে তোলার সিদ্ধান্ত নেয় যথাক্রমে ১ জানুয়ারি, ২০১৬ এবং ১২ জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখে। জাতীয় বিজ্ঞানদিবসে বিজ্ঞানীদের অভিনন্দিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বিজ্ঞানচর্চার ক্ষেত্রে অতুলনীয় অবদানের জন্য তিনি সম্মান জানালেন স্যর সি ভি রমনেরউদ্দেশেও। এই উপলক্ষে একবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতীয় বিজ্ঞান দিবসে দেশের বিজ্ঞানীদের জানাই আমারশুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। জাতি গঠন এবং দেশের অগ্রগতির ক্ষেত্রে তাঁদের ভূমিকা খুবইগুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় কর্তৃপক্ষ এবং শিক্ষা ও বৃত্তি প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে ক্ষুদ্র উন্নয়ন প্রকল্পগুলির রূপায়ণে ভারতীয় অনুদান সহায়তা সম্পর্কিত (ভারত সরকার এবং সেশেলস্‌-এর মধ্যে) স্বাক্ষরিত মউ। বিদেশ প্রতিমন্ত্রী শ্রী এম জে আকবর আবাসন, পরিকাঠামো ও স্থল পরিবহণ বিষয়ক মন্ত্রী মিসেস পামেলা শার্লেট ভারতের পানাজি পুর নিগম এবং সেশেলস্‌-এর ভিক্টোরিয়া শহরের মধ্যে মৈত্রী ও সহযোগিতা প্রসার সম্পর্কিত দ্বৈত চুক্তি। ভারতের বৈদ্যুতিন ও তথ্য প্রযুক্তি মন্ত্রকের ইন্ডিয়ান কম্প্যুটার এমার্জেন্সি রেসপন্স টিম (সিইআরটি – ইন) এবং সেশেলস্‌-এর তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি দপ্তরের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা সহযোগিতা সম্পর্কিত মউ। আবাসন, পরিকাঠামো ও স্থল পরিবহণ বিষয়ক মন্ত্রী মিসেস পামেলা শার্লেট ভারত ও সেশেলস্‌ সরকারের মধ্যে (২০১৮-২০২২ সালের জন্য) সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি বিষয়ক চুক্তি। ভারতীয় নৌ-বাহিনী এবং সেশেলস্‌-এর জাতীয় তথ্য বিনিময় ও সমন্বয় কেন্দ্রের মধ্যে হোয়াইট শিপিং সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়ের লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত চুক্তি। কৃষি ও মৎস্যচাষ বিষয়ক মন্ত্রী মিঃ চার্লস্‌ ব্যাস্টিয়েনে ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের বিদেশ সেবা প্রতিষ্ঠান এবং সেশেলস্‌-এর বিদেশ দপ্তরের মধ্যে স্বাক্ষরিত মউ। বিদেশ সেবা প্রতিষ্ঠানের ডিন শ্রী জে এস মুকুল প্রধানমন্ত্রীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে ০১.০৭.২০১৬ থেকে ৩১.০৩.২০১৮ পর্যন্ত ‘নদীর আন্তঃসংযোগ বিষয়ে বিশেষ কমিটি’র কাজের অগ্রগতি সংক্রান্ত রিপোর্ট নিয়ে অবহিত করা হয়। নদীগুলির আন্তঃসংযোগ সংক্রান্ত এই বিশেষ কমিটির কাজের অগ্রগতি বিষয়ে নির্দিষ্ট সময় অন্তর একটি করে রিপোর্ট কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার কাছে পেশ করতে হয়। আগামীকালরাজধানীর ১৫ নম্বর জনপথ-এ ডঃ আম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। একইসঙ্গে, তিনি সূচনা করবেন আর্থ-সামাজিকরূপান্তরের লক্ষ্যে ডঃ আম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রটিরও (ডিএআইসিএসইটি)। এটি হল আমার কাছে এক বিশেষ উপলক্ষ, কারণ এই কেন্দ্রটির শিলান্যাসেরসঙ্গেও আমি যুক্ত ছিলাম। আমাদের জাতীয় রাজধানীর প্রাণকেন্দ্রে এটি হয়ে উঠবে ডঃআম্বেদকরের উদ্দেশে এক যথাযোগ্য শ্রদ্ধা ও সম্মান প্রদর্শন। ডঃআম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রটি হল বৌদ্ধ চিন্তাভাবনা এবং আধুনিক স্থাপত্যের একবিশেষ মেলবন্ধন। সেমিনার এবং সম্মেলন কক্ষেরও ব্যবস্থা থাকছে এই কেন্দ্রটিতে। এছাড়াও,এখানে থাকবে তিনটি প্রেক্ষাগৃহ এবং ডিজিটাল সংরক্ষণ সমৃদ্ধ একটি বড় গ্রন্থাগার। আগামীকাল,আর্থ-সামাজিক রূপান্তরের লক্ষ্যে ডঃ আম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রেরও(ডিএআইসিএসইটি) সূচনা হবে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জেনারেল প্রায়ুৎ চান-ও-চা, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, ভারতে আপনাদের স্বাগত জানাতে পেরে আমরা আনন্দিত। দু’দেশের শীর্ষস্থানীয় রাজনৈতিক বিনিময় কর্মসূচিতে আপনাদের এই সফর আমাদের কাছে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আপনারা এসেছেন এমন একটি দেশ থেকে যা আমাদের কাছে খুবই পরিচিত। কিংবদন্তী পুরুষ রাম থেকে জ্ঞানী বুদ্ধের সময়কালে আমাদের দুটি দেশের মধ্যেই গড়ে উঠেছে এক মিলিত সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য। দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক আমাদের অংশীদারিত্বের ভিতকে আরও মজবুত করে তুলেছে। আজ প্রধানমন্ত্রী এবং আমি দু’জনেই পূর্ণাঙ্গ পর্যালোচনা করলাম আমাদের দ্বিপাক্ষিক কর্মসূচিগুলির – সংস্কৃতি থেকে বাণিজ্য; দু’দেশের জনগণের মধ্যে ঘনিষ্ঠতর যোগাযোগ থেকে দৃঢ় সংযোগ ও যোগাযোগ, এবং সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলা থেকে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা। আমরা উভয়েই অবগত যে সন্ত্রাসবাদের দ্রুত প্রসার এবং চরমপন্থী মতবাদ আমাদের দু’দেশের সমাজকেই এক সাধারণ চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি এনে দিয়েছে। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আমাদের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্ব যে এই সমস্ত হুমকির ঘটনা থেকে আমাদের দু’দেশের জনগণকে সুরক্ষিত রাখতে পারবে সে কথাও আমরা স্বীকার করেছি। এই চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলার লক্ষ্যে আমরা যে কর্মসূচি স্থির করেছি, তাতে সাহায্য ও সহযোগিতার জন্য ভারত বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ থাইল্যান্ডের কাছে। সন্ত্রাসবাদের বাইরেও সাইবার নিরাপত্তা, মাদকচালান রোধ, অর্থনৈতিক অপরাধ সংক্রান্ত ঘটনার মোকাবিলা এবং মানবপাচার রোধে আমাদের নিরাপত্তা সহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তুলতে সম্মত হয়েছি আমরা। আমাদের দু’দেশের স্থল সীমান্ত কিন্তু একে অপরের থেকে খুব বেশি দূরে নয়। সমুদ্রপথেও আমরা আবার পরস্পরের প্রতিবেশী। তাই, আমি এবং প্রধানমন্ত্রী ঘনিষ্ঠ প্রতিরক্ষা ও নৌ-সহযোগিতার প্রসারেও সহমত প্রকাশ করেছি। আমাদের এই অংশীদারিত্ব দুটি দেশের স্বার্থে; আমাদের এই সহযোগিতা দু’দেশের সাধারণ লক্ষ্যপূরণে। আমরা গড়ে তুলতে চাই এমন এক অংশীদারিত্ব যার মূলে থাকবে, বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও অভিজ্ঞতা বিনিময়; কর্মীদের আরও বেশি করে বিনিময় সফরসূচি ও কাজকর্ম; সমুদ্রপথে জলদস্যুতা রোধে পারস্পরিক সহযোগিতা; জোরদার নৌ-প্রহরা, এবং প্রতিরক্ষা সম্পর্কে গবেষণা, উন্নয়ন ও সাজসরঞ্জাম উৎপাদনের ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠতর সহযোগিতা। বর্তমান বিশ্বে সবক’টি রাষ্ট্রই একে অপরের ওপর নির্ভরশীল, ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রবাহ তাদের কাছে এক গুরুত্বপূর্ণ জীবনরেখা। ব্যবসা-বাণিজ্যের পাশাপাশি নির্মাণ, উৎপাদন এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সম্পর্ক গড়ে তোলার প্রচুর পথ ও উপায় রয়েছে আমাদের এই দুটি দেশের সামনে। পর্যটন পরিকাঠামো সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে থাইল্যান্ডের শক্তির সঙ্গে ভারতের অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলি যুক্ত হওয়ার উজ্জ্বল সম্ভাবনা আমরা লক্ষ্য করেছি। তথ্যপ্রযুক্তি, ওষুধ উৎপাদন, গাড়ির যন্ত্রাংশ নির্মাণ এবং অন্যান্য যন্ত্রপাতি উৎপাদনের ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতার সম্ভাবনা যথেষ্ট প্রতিশ্রুতিময়। আমাদের এই দুটি দেশের মধ্যে সুসংহত অর্থনৈতিক ও সহযোগিতা সম্পর্কিত চুক্তি সম্পাদনের কাজ ইতিপূর্বেই সম্পূর্ণ হয়েছে। আমাদের দু’দেশের অর্থনীতিতে পণ্য, পরিষেবা, মূলধন এবং মানবসম্পদের যোগান যাতে অব্যাহত রাখা যায় সেই লক্ষ্যে জল, স্থল এবং আকাশপথে যোগাযোগের একটি ভালো নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তা সম্পর্কেও সম্পূর্ণভাবে অবহিত মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং আমি। এই লক্ষ্যে ভারত-মায়নামার-থাইল্যান্ড – এই ত্রিদেশীয় মহাসড়ক নির্মাণের কাজ অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে সম্পূর্ণ করার ওপর আমরা জোর দিয়েছি; আমরা গুরুত্ব আরোপ করেছি এই তিন দেশের মধ্যে যান চলাচল সম্পর্কিত চুক্তি স্বাক্ষরের ওপরও। ভারতের বিকাশ ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সংযোগ ও যোগাযোগ আরেকটি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। আমাদের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি থেকে দক্ষিণ এশিয়ায় যাতায়াত ব্যবস্থাকে উন্নত করে তুললে উপকৃত হবেন দু’দেশের মানুষই। বলিষ্ঠ যোগাযোগের প্রয়োজন শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক প্রসারের স্বার্থেই নয়। এর মাধ্যমে দু’দেশের জনসাধারণ পরস্পরের আরও কাছে আসার সুযোগ পাবেন এবং এই ব্যবস্থায় প্রসার লাভ করবে বিজ্ঞান, শিক্ষা, সংস্কৃতি ও পর্যটন সংক্রান্ত সহযোগিতাও। আগামী বছর আমাদের দুটি দেশের কূটনৈতিক সম্পর্কের ৭০ বছর পূর্তি উপলক্ষে থাইল্যান্ডে আমরা আয়োজন করব ভারতোৎসব-এর এবং থাইল্যান্ড উৎসব আয়োজিত হবে ভারতে। বর্তমান বছরটিতে ভারতীয় সংবিধানের স্থপতি ডঃ বি আর আম্বেদকরের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালিত হচ্ছে আমাদের দেশে। আমি একথা ঘোষণা করতে পেরে খুবই আনন্দিত যে ভারতীয় সংবিধান শীঘ্রই থাই ভাষায় অনূদিত হতে চলেছে। ভারতের জন্য থাইল্যান্ডের রাজ পরিবারের যে উষ্ণ আন্তরিকতা রয়েছে আমরা বরাবরই তার গভীর প্রশংসা করে এসেছি। মাননীয় যুবরাজ ভাজিরালংকর্ন-কে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এ দেশে স্বাগত জানাতে পারব বলে আমরা আশাবাদী। পরিশেষে, থাইল্যান্ডের ‘পশ্চিমে তাকাও’ এবং ভারতের ‘পূবে তাকাও’ নীতি দুটির সমন্বয়ে আমাদের পারস্পরিক অংশীদারিত্বের পথ আরও উজ্জ্বল আলোয় আলোকিত হয়ে উঠবে এই আশা ও অপেক্ষায় রইলাম আমরা। সেনা জওয়ানদের জন্য ‘এক পদ, এক অবসরকালীন ভাতা’ সম্পর্কে তাঁর প্রতিশ্রুতির কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, গতকাল এই বিষয়ে ঘোষনা করার মধ্য দিয়ে সরকার প্রতিশ্রুতি পালন করেছে। এই প্রতিশ্রুতি পালনের জন্য সরকারকে ৮০০০ কোটি টাকা থেকে ১০,০০০ কোটি টাকা পর্যন্ত ব্যয়ভার বহন করতে হবে যা আগেকার অনুমিত হিসাবের চাইতে তাৎপর্যপূর্ণভাবেই বেশি। আজ ফরিদাবাদে বদরপুর-ফরিদাবাদ মেট্রো লাইনের উদ্বোধন করার পর প্রধানমন্ত্রী একথাগুলো বলেন। প্রধানমন্ত্রী আক্ষেপ করে বলেন, দেশের প্রগতির লক্ষ্যে সরকারের গৃহীত প্রতিটি সিদ্ধান্ত নিয়ে রাজনীতি করা ফ্যাসন হয়ে দাঁড়িয়েছে। সেনা জওয়ান এবং দেশবাসীদের ভুল পথে চালিত করা কারুরই উচিত নয়, জোর দিয়ে এ মত ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিকাশ রাজনীতির মাধ্যমে নয়, হবে রাষ্ট্রনীতির মাধ্যমেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেনা জওয়ানদের একটা বড় অংশই হরিয়ানাবাসী এবং তাই, ওআরওপি ঘোষনা হরিয়ানার অর্থনীতিতে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে। উন্নয়নই হচ্ছে সব সমস্যার সমাধান, একথা পুনর্ব্যক্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের উন্নয়নের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার সব ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে। তিনি বলেন, সম্প্রতি সারা বিশ্ব আর্থিক দুর্গতির মুখোমুখি হয়েছে, কিন্তু তখনো ভারতের অর্থনীতি দৃঢ়তা দেখিয়েছে। তিনি আরও বলেন, কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারকে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে সকলের জন্য আবাসনের ব্যবস্থা করার লক্ষ্যে সরকারের সিদ্ধান্তের কথা তিনি আবারও জানান। প্রধানমন্ত্রী মেট্রো রেলে চড়ে সেন্ট্রাল দিল্লি থেকে ফরিদাবাদে পৌঁছান এবং ফিরে আসেন। এই ব্যবস্থা অপরিশোধিত তেল সংগ্রহের জন্য দক্ষতাসম্পন্ন, নমনীয় ও বহুমুখী নীতির সংস্থান করবে যার ফলে ভোক্তারাও উপকৃত হবে। উল্লেখ্য, অপরিশোধিত তেল আমদানির জন্য বর্তমানে যে নীতি চালু রয়েছে তাতে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছিল ১৯৭৯-তে। গত ২০০১-এ মন্ত্রিসভা এই নীতিতে কিছু সংশোধনীতে অনুমোদন দেয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সিয়াচেনে জওয়ানদের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “সিয়াচেনে সৈনিকদের মৃত্যু অত্যন্ত দুঃখজনক। যেসব বীর জওয়ানরা দেশের জন্য প্রাণ দিলেন, আমি তাঁদের অভিবাদন জানাই। মিশরের বিদেশ মন্ত্রী শ্রী সামে হাসান শৌক্রি দ্বিপাক্ষিক যৌথ কমিশনের সপ্তম বৈঠক উপলক্ষে ভারতে এসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শুক্রবার সাক্ষাৎ করেন। তিনি প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীকে মিশরের রাষ্ট্রপতি শ্রী সিসি-র শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। প্রধানমন্ত্রীও তাঁর মাধ্যমে শ্রী সিসি-কে শুভেচ্ছা পাঠান। উভয় নেতাই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক জোরদার করতে ভারত ও মিশরের যৌথ অঙ্গীকারের বিষয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে জীবপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারত-কিউবা এবং ভারত-কোরিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের বিষয়ে জানানো হয়েছে। গত ২২শে জুন কিউবার হাভানাতে এবং গত ৯ই জুলাই নতুন দিল্লীতে মউ দুটি স্বাক্ষরিত হয়। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে কিউবা এবং কোরিয়াকে সহযোগিতা করার প্রয়াসে এই মউ দুটি স্বাক্ষরিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আফগানিস্হানে গতকালের জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আফগানিস্হানে গতকালের জঙ্গি হামলার আমরা তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। এটি আফগানিস্হানের বহুমুখী ধ্যানধারনার ওপর এক আক্রমন। শোক-সন্তপ্ত পরিবারগুলিকে আমার সমবেদনা জানাই। আহতদের দ্রুত সুস্হতা কামনা করি। বয়োজ্যেষ্ঠ পেনশেন বীমা যোজনা ২০১৭ চালু করার বিষয়ে কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা সূচনা-উত্তর অনুমোদন দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরপৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও সামাজিকনিরাপত্তা বিধানে সরকারের অঙ্গীকারের অঙ্গ হিসেবে এটির অনুমোদন দেওয়া হয়। বর্তমান অর্থবর্ষে জীবন বীমা নিগম (এলআইসি)-র মাধ্যমে প্রকল্পটিরূপায়িত হবে। বয়োবৃদ্ধদের সামাজিক সুরক্ষা দানের জন্য এবং ৬০ বছর বা তার বেশিবয়স্কদের সুদ জনিত আয় হ্রাস পাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে উপার্জনের স্হিরতা দিতে এইপ্রকল্প ১০ বছর ধরে বার্ষিক ৮ শতাংশ হারে পেনশনের নিশ্চয়তা দেবে, এবং এক্ষেত্রেমাসিক / ত্রৈমাসিক / সান্মাষিক ও বার্ষিক ভিত্তিতে পেনশন তোলা যাবে। এলআইসি-র পক্ষ থেকে প্রদত্ত আয়আর ৮ শতাংশ হারে নিশ্চয়তামূলক প্রদানের মধ্যের ব্যবধানটুকু ভারত সরকার বার্ষিকভর্তুকি হিসেবে পূরণ করবে। ১)স্নাতকোত্তর শিক্ষা ২) চিকিৎসাকর্মীদের প্রশিক্ষণ ৩)ফার্মাসিউটিক্যালস্‌ ও ফার্মাকোইকোনোমিক্স এই নিয়েতৃতীয়বার আমি অংশগ্রহণ করছি ভারত-আসিয়ান শীর্ষ বৈঠকে। আসিয়ান রাষ্ট্রগুলির সঙ্গেবিগত বছরগুলিতে আমরা যে ঘনিষ্ঠ মৈত্রী সম্পর্ক গড়ে তুলেছি, তার সূত্রে এই বন্ধনকেআরও নিবিড় করে তোলার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। এই বৈঠকের সুন্দর উদ্যোগ আয়োজন এবংউষ্ণ অভ্যর্থনার জন্য আপনাদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। ভিয়েনটানহল একটি সুন্দর ঐতিহ্যবাহী শহর যেখানে সফরকালে ভারতের সঙ্গে এই দেশের গভীরঐতিহাসিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্কের স্মৃতি রোমন্থন করি আমি। একটি আয়োজক দেশ হিসেবেআসিয়ান-ভারত সম্পর্ক স্থাপনের ক্ষেত্রে যোগ্য নেতৃত্ব দানের জন্য আমি বিশেষপ্রশংসা করি ভিয়েতনামের। এর মূল চালিকাশক্তি হল আমাদের সাধারণকৌশলগত অগ্রাধিকারের বিষয়গুলি। ‘পূবে তাকাও’ নীতির কেন্দ্রবিন্দু হল আসিয়ান এবংআমাদের পারস্পরিক সম্পর্ককে এই অঞ্চলে ভারসাম্য ও সম্প্রীতি রক্ষার এক বিশেষউৎসমুখ হিসেবে চিহ্নিত করা যায়। আমাদেরকৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আসিয়ানের তিনটি প্রধান কর্মপ্রচেষ্টাকে ঘিরে আবর্তিতহচ্ছে। নিরাপত্তা, অর্থনীতি এবং আর্থ-সামাজিকতার কর্মতৎপরতার সঙ্গে যুক্ত আসিয়ান দেশগুলি।আনন্দের কথা, ২০১৬-২০২০ এই সময়কালের জন্য যে আসিয়ান-ভারত কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করাহয়েছে, তা আমাদের লক্ষ্য পূরণে সম্পূর্ণভাবে সফল হবে বলে আমরা আশাবাদী। আমাদেরকর্মসূচিতে যে ১৩০টি বিষয় আমরা চিহ্নিত করেছি, তার মধ্যে ৫৪টি ইতিমধ্যেই বাস্তবয়িতহয়েছে। আসিয়ানের সঙ্গে ভারতের কৌশলগত অংশীদারিত্বেরকেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে ব্যবহারিক, অর্থনৈতিক, প্রাতিষ্ঠানিক, সাংস্কৃতিক ও ডিজিটাল– এই সবকটি ক্ষেত্রে সংযোগ ও যোগাযোগের প্রসার ও উন্নয়নের বিষয়গুলি । অস্থিরতার এই হুমকি একই সঙ্গে ঘটেচলেছে স্থানীয়, আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে। এই পরিস্থিতিতে আসিয়ানের সঙ্গেআমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এমন এক সমাধানের পথ খুঁজে পেতে আগ্রহী, যা বিভিন্নপর্যায়ে সহযোগিতা, সমন্বয় ও অভিজ্ঞতা বিনিময়ের আদর্শকে মূর্ত করে তুলবে। আগামী বছরটি হল আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে একঐতিহাসিক দিকচিহ্ন । কারণ,ঐ বছরটিতে আমরা উদযাপন করব আমাদের আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময়ের ২৫তম বছর, শীর্ষ বৈঠকপর্যায়ের আলাপ-আলোচনার ১৫তম বছর এবং কৌশলগত অংশীদারিত্বের পঞ্চম বছর। উদযাপনের মুহূর্তটি শুরু হবে ২০১৭ সালে আসিয়ান-ভারতবিদেশ মন্ত্রীদের এক বৈঠক আয়োজনের মধ্য দিয়ে। ‘এক মিলিত মূল্যবোধ, এক সাধারণভাগ্যলিপি’ – এই বিষয়টির ওপর আমরা আয়োজন করব এক স্মারক শীর্ষ বৈঠকের। আমাদের এইস্মারক উৎসবকে সফল করে তোলার লক্ষ্যে আপনাদের সকলের সঙ্গে একযোগে কাজ করে যেতে আমিবিশেষভাবে আগ্রহী। নীতি সংশোধনের প্রস্তাবটিতে বলা হয়েছে যে,প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের জমি লিজ-এর ভিত্তিতে যোগাযোগ পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজেব্যবহার করা যাবে। “যুক্তরাজ্যের নতুন প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করায় অভিনন্দন জানাই মিসেস তেরেসা মে-কে। ভারত-যুক্তরাজ্য সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তুলতে তাঁর সঙ্গে কাজ করার জন্য আমরা আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছি। “দৃষ্টিহীনদের টি-২০বিশ্বকাপে ভারত জয়ী হয়েছে জেনে আমি খুবই আনন্দিত। ভারতীয় দলকে আমার অভিনন্দনজানাই। পৃথিবীর অন্যান্য দেশ এবং আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির নির্বাচন পরিচালন কর্তৃপক্ষগুলির সঙ্গেনির্বাচনী কাজকর্ম সম্পর্কে সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে ভারতের নির্বাচন কমিশনের একপ্রস্তাব আজ অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এই দেশ ও নির্বাচন কর্তৃপক্ষগুলি হল : ১)ইক্যুয়েডরের জাতীয় নির্বাচন পরিষদ; ২)আলবানিয়ার কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন; ৩)ভুটানের নির্বাচন কমিশন; ৪)আফগানিস্তানের স্বাধীন নির্বাচন কমিশন; ৫)গিনি-র জাতীয় নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন; ৬)মায়ানমারের কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশন; ৭)গণতন্ত্র ও নির্বাচন পরিচালন সম্পর্কিত ভারতের আন্তর্জাতিক গণতান্ত্রিকপ্রতিষ্ঠান (আইআইআইডিইএম) এবং গণতন্ত্র ওনির্বাচন প্রক্রিয়ায় সহায়তা সম্পর্কিত আন্তর্জাতিক সংস্থা(আন্তর্জাতিক আইডিইএ)। ভারতে এই ধরনের প্রকল্প এই সর্বপ্রথম। প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হবে এই প্রকল্পটিতে। প্রায় দু’একর জমিতে কমলা লেবু চাষের সঙ্গে যুক্ত ৫ হাজার কৃষক এই প্রকল্পটিতে উপকৃত হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। রেমন্ড ইন্ডাস্ট্রিজ এবং মহারাষ্ট্র শিল্পোন্নয়ন নিগমের মধ্যে আরেকটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হয় ‘ফার্ম টু ফ্যাব্রিক’ কর্মসূচি রূপায়ণের লক্ষ্যে। লিনেন সুতো এবং পোশাকের কাপড় উৎপাদনের জন্য রেমন্ড এই প্রকল্পে বিনিয়োগ করবে ১,৪০০ কোটি টাকা। ভারতীয় বণিকসভাগুলির সংগঠন ফিকি’র ৯০তম বার্ষিকসাধারণসভার উদ্বোধনী পর্বে আজ ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দুর্নীতি ও কালোটাকার মতো অভ্যন্তরীণ সমস্যাগুলি থেকে মুক্তি পাওয়াই এখন সাধারণ মানুষের ঐকান্তিকইচ্ছা ও বাসনা। এই পরিস্থিতিতে জনসাধারণের আবেগ, অনুভূতি ও চাহিদাগুলির কথা মনেরেখে সেই মতো কাজ করে যাওয়া উচিৎ দেশের সবকটি রাজনৈতিক দল এবং বণিকসভাগুলির। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা উত্তরকালে অনেকক্ষেত্রেই সাফল্য যেমন অর্জিত হয়েছে, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জ ও সমস্যারও তেমনই উদ্ভবঘটেছে। তাই, এই বিশেষ লক্ষ্য পূরণেকাজ করে চলেছে বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার, যাতে একটি স্বচ্ছ ও সংবেদনশীল কর্মপদ্ধতিগড়ে ওঠে। কিন্তু অ্যাকাউন্ট গ্রহীতাদের স্বার্থ রক্ষায় কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষভাবেতৎপর, যা কিনা গুজব ও রটনার সম্পূর্ণ বিপরীত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ফিকি’র মতো সংগঠনগুলিরদায়িত্ব হ’ল এই ধরণের বিষয়গুলি সম্পর্কে সচেতনতার প্রসার ঘটানো । সেইস ঙ্গে, পণ্য ও পরিষেবা কর অর্থাৎজিএসটি’কে যাতে সফল ও কার্যকর করে তোলা যায়, তা দেখাও ফিকি’র অন্যতম দায়িত্বেরমধ্যেই পড়ে। দেশের সর্বোচ্চ সংখ্যক শিল্পোদ্যোগ ও বাণিজ্যিক প্রচেষ্টাকে জিএসটি’রআওতায় নিয়ে আসার লক্ষ্যে সচেষ্ট রয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রীর মতে,পদ্ধতিগত ব্যবস্থাকে যত ব্যবহারিক করে তোলা হবে, ততই আখেরে লাভবান হবেন দেশেরদরিদ্র সাধারণ মানুষ। এই লক্ষ্যে দেশের ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী ও শিল্পোদ্যোগীদের মধ্যে ব্যাপক সচেতনতাগড়ে তুলতে ফিকি এগিয়ে আসবে বলেই আশা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন,কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রেও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছেতাঁর সরকার । প্রধানমন্ত্রী বলেন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ,স্টার্ট-আপ, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়, সৌরশক্তি এবং স্বাস্থ্য পরিচর্যার মতোক্ষেত্রগুলিতেও এক গুরু দায়িত্ব পালন করতে পারে ফিকি। সুলভ সৌরশক্তির জন্য দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রবাসী ভারতীয়দের ভূমিকা নিয়ে অনাবাসী ভারতীয়দের একটি প্রতিনিধিদল গত শুক্রবার নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। দেশে এবং বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয়দের এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন – বিশেষজ্ঞ, শিক্ষাবিদ, উদ্ভাবক, শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীরা ছিলেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা গত দু’দিন ধরে সৌর বিদ্যুৎ, অফ গ্রিড ও মাইক্রো গ্রিড সলিউশন, সৌর বিদ্যুৎ সংরক্ষণ, পরবর্তী প্রজন্মের সৌর বিদ্যুৎ প্রযুক্তি এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে অর্থ যোগানের অভিনব পন্থা-পদ্ধতি নিয়ে যে আলাপ-আলোচনা করেছেন, তার পরিণতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। দপ্তরের বাইরে কাজের অভিজ্ঞতা অর্থাৎ ফিল্ড ট্রেনিং সম্পর্কে অভিজ্ঞতা বিনিময়ে আগ্রহী হয়ে ওঠার জন্য আধিকারিকদের উৎসাহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। জন অংশীদারিত্ব, তথ্যের যোগান, সহায়সম্পদের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার এবং সরকারি প্রশাসন ও পরিচালন ব্যবস্হার ওপর সাধারণ মানুষের আস্হার মতো বিষয়গুলি সম্পর্কেও তরুণ আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করেন তিনি। ‘গ্রাম স্বরাজ অভিযান’ এবং ‘আষুষ্মান ভারত’-এর মতো কেন্দ্রীয় সরকারের সাম্প্রতিক উদ্যোগ ও কর্মসূচিগুলির কথাও উঠে আসে তাঁদের আলাপচারিতায়। আমার মন্ত্রিসভার সহকর্মীবৃন্দ ডঃ হর্ষবর্ধন, ডঃ মহেশ শর্মা, শ্রী মনোজ সিনহা, রাষ্ট্রসঙ্ঘের পরিবেশ কর্মসূচির কার্যনির্বাহী নির্দেশক, পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রকের সচিব, ভারত ও বিদেশের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ, ভারতের ১৩০ কোটি মানুষের পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে নতুন দিল্লিতে স্বাগত জানাতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই অনুষ্ঠানের পাশাপাশি আমি আশা করি, বিদেশ থেকে আগত আমাদের সঙ্গে সামিল অতিথি ও প্রতিনিধিরা দিল্লির ইতিহাস ও জাঁকজমকপূর্ণ কিছু নিদর্শন দেখারও সময় পাবেন। বিশ্ব পরিবেশ দিবস ২০১৮’র আয়োজক দেশ হিসাবে আমরা গর্বিত। এই গুরুত্বপূর্ণ দিনটি উদযাপনের পাশাপাশি আমরা বিশ্বজনীন ভাতৃত্ববোধের প্রাচীন বৈশিষ্ট্যগুলিও স্মরণ করি। অতিপরিচিত সংস্কৃত শব্দসমষ্টি ‘বসুধৈব কুটুম্বকম্‌’ অর্থাৎ এই বিশ্ব একটি পরিবার – এর মধ্যে আমাদের ঐ প্রাচীন বৈশিষ্ট্য ফুটে উঠেছে। আমাদের আস্থার প্রতীক মহাত্মা গান্ধীর মধ্যেও ঐ একই বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটেছে। তিনি বলেছিলেন যে, প্রত্যেকের চাহিদা পূরণে এই গ্রহ অনেক কিছু দিয়ে থাকে, কিন্তু প্রত্যেকের আকাঙ্খা পূরণের জন্য এই গ্রহ যথেষ্ট নয়। প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানে বেঁচে থাকার গুরুত্বের কথা আমাদের ঐতিহ্যে রয়েছে। প্রকৃতির উপাদানগুলির প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা প্রদর্শনের মাধ্যমে তা প্রতিফলিত হয়েছে। আমাদের উৎসব, অনুষ্ঠান এবং আমাদের প্রাচীন পুঁথি ও গ্রন্থেও সর্বদাই এটি প্রতিফলিত হয়। ভারত আজ বিশ্বের দ্রুততম বিকাশশীল অর্থনীতি। এই দেশবাসীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। সুস্থায়ী ও প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানে এই মানোন্নয়নে আমরা বদ্ধপরিকর। বিষাক্ত ধোঁয়ার কবল থেকে এই রান্নার গ্যাস সংযোগ গ্রামীণ মহিলাদের মুক্তি দিয়েছে। এরফলে, জ্বালানি কাঠের ওপর থেকেও তাঁদের নির্ভরশীলতা দূর হয়েছে। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের এক উচ্চাকাঙ্খী লক্ষ্য পূরণে আমরা কাজ করছি। ২০২২ সাল নাগাদ আমরা ১৭৫ মেগাওয়াট সৌর ও বায়ুশক্তি উৎপাদনের লক্ষ্য স্থির করেছি। বিশ্বে সৌরশক্তি উৎপাদনের দিক থেকে এখন আমাদের স্থান পঞ্চম। কেবল তাই নয়, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রেও আমরা ষষ্ঠ স্থানে রয়েছি। জীবাশ্ম জ্বালানির ওপর থেকে নির্ভরশীলতা আমরা কমাচ্ছি। যেখানে সম্ভব সেখানেই আমরা জ্বালানির উৎস খোঁজ করছি। আমরা শহরগুলির রূপান্তর ঘটাচ্ছি এবং গণপরিবহণ ব্যবস্থার পরিবর্তন নিয়ে আসছি। দেশ হিসাবে আমরা নবীন। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে ভারতকে বিশ্বের উৎপাদন হাব হিসাবে গড়ে তোলার দিশায় কাজ করছি। আমরা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ অভিযান শুরু করেছি। এই অভিযানের মাধ্যমে উৎপাদন ক্ষেত্রে ‘জিরো ডিফেক্ট’ ও ‘জিরো এফেক্ট’ (পরিবেশের ওপর) প্রক্রিয়ায় গুরুত্ব দিচ্ছি। উদ্দেশ্য হ’ল উৎপাদন ব্যবস্থায় ভুল-ত্রুটি দূর করে পরিবেশের ওপর হানীকারক প্রভাব রোধ করা। পরিবেশ দূষণ রোধে জাতীয় সংকল্পের অঙ্গ হিসাবে ২০০৫ থেকে ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের গড় অভ্যন্তরীণ উৎপাদন (জিডিপি) অনুযায়ী কার্বন নিঃশরণের পরিমাণ ৩৩-৩৫ শতাংশ পর্যন্ত হ্রাস করতে ভারত বদ্ধপরিকর। ২০৩০ সালের মধ্যেই এই লক্ষ্য পূরণ করার পথে আমরা অগ্রসর হচ্ছি। আমাদের এক মজবুত ‘জাতীয় জৈব বৈচিত্র্য কর্মপন্থা’ রয়েছে। সমগ্র বিশ্বের মাত্র ২.৭ শতাংশ এলাকা ভারতের ভৌগলিক সীমানা হওয়া সত্ত্বেও, এখানে জৈব বৈচিত্র্যের ৭-৮ শতাংশের অস্তিত্ব রয়েছে। একই সঙ্গে, সমগ্র বিশ্বের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৮ শতাংশের বাস ভারতে। আমাদের বনাঞ্চল ও বৃক্ষশোভিত এলাকার পরিমাণ বিগত দু’বছরে ১ শতাংশ বেড়েছে। বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ ক্ষেত্রেও আমরা ভালো সাফল্য পেয়েছি। বিভিন্ন বন্যপ্রাণী যেমন – বাঘ, হাতি, সিংহ, গন্ডারের সংখ্যা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমরা ‘নমামি গঙ্গে’-র মতো বিরাট উদ্যোগ নিয়েছি ইতিমধ্যেই এই কর্মসূচির সুফল পাওয়া শুরু হয়েছে। শীঘ্রই আমাদের সবচেয়ে পবিত্র নদী গঙ্গার পুনরুজ্জীবন ঘটবে। ভারত মূলত কৃষি প্রধান দেশ। কৃষির জন্য জলের নিরবচ্ছিন্ন যোগান অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিটি কৃষি জমিতে জল পৌঁছে দিতে আমরা প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা শুরু করেছি। আমাদের লক্ষ্য ‘প্রতি ফোটায়, আরও বেশি ফসল’। আমাদের অভিজ্ঞতা বলে যে, উন্নয়ন পরিবেশ-বান্ধব হতে পারে। তবে এই উন্নয়ন আমাদের সবুজ সম্পদের বিনিময়ে হওয়া উচিৎ নয়। এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসে একটি অত্যন্ত জটিল চ্যালেঞ্জের সমাধানের কথা বলা হয়েছে। প্লাস্টিকের বিপদ মানবজাতির কাছে ভীতির কারণ হয়ে উঠেছে। এই প্লাস্টিকের অধিকাংশই রি-সাইকেল বা পুনর্ব্যবহার হয়ে ওঠে না। এমনকি, এর অধিকাংশই নন-বায়ো ডিগ্রেবল বা পরিবেশের পক্ষে হানীকর। আমাদের সামুদ্রিক জৈব বৈচিত্র্যে প্লাস্টিক দূষণের মারাত্মক প্রভাব পড়েছে। বিজ্ঞানী ও মৎস্যজীবীরা উভয়ই এই বিপদের ইঙ্গিত দিয়েছেন। এরফলে, মাছের পরিমাণ হ্রাস পাচ্ছে, সমুদ্রের জলের তাপমাত্রা বাড়ছে এবং বাসস্থান বিনাশ হয়ে যাচ্ছে। সামুদ্রিক বর্জ্য বিশেষ করে, মাইক্রো প্লাস্টিকের সমস্যার কোনও দেশের গন্ডীর মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। প্লাস্টিক দূষণ আমাদের খাদ্য-শৃঙ্খলেও ছড়িয়ে পড়েছে। ঘটনা হ’ল – লবণ, বোতল বন্দী জল ও কলের জলের মতো মৌলিক খাবারের সঙ্গে মাইক্রো প্লাস্টিক জড়িয়ে রয়েছে। উন্নত বিশ্বের বহু জায়গার তুলনায় ভারতে মাথাপিছু প্লাস্টিকের ব্যবহার অনেক কম। পরিচ্ছন্নতা ও স্বাস্থ্যবিধান সম্পর্কিত আমাদের জাতীয় মিশন ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’-এ প্লাস্টিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। সম্প্রতি কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রকের একটি প্রদর্শনী আমি ঘুরে দেখেছি। প্রদর্শনীতে আমাদের সাফল্যের কাহিনীগুলি তুলে ধরা হয়েছে। এতে রাষ্ট্রসংঘ, কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারগুলি, শিল্প সংস্থা ও অসরকারি সংগঠনগুলি অংশ নিয়েছে। আমি আশা করি যে, প্লাস্টিক দূষণ রোধেও তাঁরা দৃষ্টান্তমূলক কর্মকান্ড চালিয়ে যাবে। পরিবেশের অবক্ষয় সবচেয়ে বেশি দুর্বল ও দরিদ্র মানুষজনকে আঘাত করে। পার্থিব সমৃদ্ধির জন্য আমাদের যাতে পরিবেশের সঙ্গে আপোষ করতে না হয়, তা সুনিশ্চিত করার দায়িত্ব ও কর্তব্য আমাদের প্রত্যেকের। ২০৩০ সালের মধ্যে সুস্থায়ী উন্নয়নের অঙ্গ হিসাবে সমগ্র বিশ্ব ‘কেউ পিছনে পড়ে থাকবে না’ – এ বিষয়ে সম্মত হয়েছে। প্রকৃতি মাকে সুরক্ষিত না রাখতে পারলে এই উদ্দেশ্য পূরণ সম্ভব নয়। পরিবেশের সুরক্ষায় ভারত এভাবেই এগিয়ে চলেছে। বিশ্ব পরিবেশ দিবস উদযাপন উপলক্ষে আন্তর্জাতিক সমষ্টির সঙ্গে আমাদের এই উদ্দেশ্য ভাগ করে নিতে পেরে আমরা আনন্দিত। পরিশেষে, বিশ্ব পরিবেশ দিবস, ২০১৮-র আয়োজক হিসাবে আমি পুনরায় সুস্থায়ী উন্নয়নের প্রতি আমাদের অঙ্গীকারের কথা উল্লেখ করছি। প্লাস্টিক দূষণ রোধ ও এই গ্রহকে আরও ভালো বাসযোগ্য করে তুলতে আসুন আমরা একজোট হই। আজ আমরা যে সমস্ত সিদ্ধান্ত নিচ্ছি, তা আমাদের সকলের ভবিষ্যৎ স্থির করে দেবে। সিদ্ধান্ত গ্রহণ সহজ কাজ নয়। কেরলের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ওমেন চান্ডির সঙ্গে গুরুতর আহতদের উদ্ধার ও চিকিৎসা সম্পর্কে কথা বলেন শ্রী মোদী। আহতদের হেলিকপ্টারে করে অন্যত্র নিয়ে যাওয়ারও পরামর্শ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দ্রুত কেরলে পৌঁছে যান কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রী শ্রী জে পি নাড্ডাও। জম্মু ওকাশ্মীরের ১০০ জনেরও বেশি কিশোর ও তরুণদের একটি দলের সঙ্গে মঙ্গলবার একআলাপচারিতায় মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বর্তমানে ঐ দলটি ‘ওয়াতনকো জানো’ কর্মসূচির আওতায় দেশের বিভিন্ন প্রান্ত সফর করছে। কিশোর ওতরুণদের সঙ্গে আলাপচারিতাকালে জম্মু ও কাশ্মীরে যোগাযোগ ও পরিকাঠামোর প্রসারেকেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার কথা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী।তিনি গুরুত্ব দেন খেলাধূলার প্রসারের ওপরও। খেলোয়াড় সুলভ মানসিকতা সাধারণের মধ্যেগড়ে তোলা উচিৎ বলে মনে করেন তিনি। নয়াদিল্লি, ১৮ মার্চ, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এখানে এক অনুষ্ঠানে বার্ষিক বটুকভাই দীক্ষিত পুরস্কার ১৩ জন গুজরাটি সাংবাদিকদের হাতে তুলে দেন। সুরাত শহর পত্রকার কল্যাণনিধির দেওয়া এই সম্মানলাভের জন্য প্রাপকদেরকে তিনি অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সৌরাষ্ট্র প্যাটেল কালচারাল সমাজের অষ্টম আন্তর্জাতিক কনভেনশনে ভাষণ দিয়েছেন। এ বছর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ায় সৌরাষ্ট্র প্যাটেল কালচারাল সমাজের আন্তর্জাতিক এই কনভেনশনের আয়োজন করা হয়েছে। অনাবাসী ভারতীয়দের, বিশেষ করে, সৌরাষ্ট্র প্যাটেল গোষ্ঠীর বিভিন্ন উদ্যোগের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনাবাসী ভারতীয়রা সর্বদাই ভারতকে গর্বিত করেছে। তিনি বলেন, তাঁদের কাজ বিশ্বের সর্বত্র ভারতীয় পাসপোর্টের মর্যাদা বৃদ্ধির পক্ষে সহায়ক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন ধরণের কর্মসূচি, যেমন – স্বচ্ছ ভারত, দেশে পর্যটনের উন্নতি ঘটিয়েছে। তিনি অনাবাসী ভারতীয় জনগোষ্ঠীকে, প্রতি বছর কমপক্ষে ৫টি বিদেশি পরিবারকে ভারত দর্শনে আসার জন্য উদ্বুদ্ধ করার আহ্বান জানান। তিনি মহাত্মা গান্ধীর স্বপ্ন ‘স্বচ্ছ ভারত’কে সফল করে তোলার ক্ষেত্রে কিভাবে অনাবাসী ভারতীয়রা অবদান রাখতে পারেন, সে বিষয়েও আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ভারতে এই বছরের ২রা অক্টোবর থেকে মহাত্মা গান্ধীর ১৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন শুরু হবে। এই উপলক্ষে আয়োজিত জমায়েতে ভাষণ দিয়ে নরেন্দ্র মোদী বলেন যে, ভারতকে বর্তমানে বিশ্বের এক উজ্জ্বলতম জ্যোতিষ্ক হিসাবে দেখা হচ্ছে। তিনি বলেন, অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থার মতো উদ্যোগের ফলে সৎভাবে ব্যবসার কাজ করা মানুষের পক্ষে সহায়ক হয়েছে। এইসব উদ্যোগের ফলেই বিগত চার বছরে ভারত, সহজে ব্যবসার সুযোগ সংক্রান্ত ক্রমতালিকায় এক লাফে ৪২তম ধাপ অতিক্রম করেছে। প্রকল্পের সুবিধা : এর ফলে,সারা দেশে বিচারকদের কাজকর্মের উন্নয়ন সম্ভব হবে এবং প্রত্যেক নাগরিকের জন্যসুবিচারের ব্যবস্থা গড়ে তোলা যাবে। রাজ্য সরকারগুলি এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলেরপ্রশাসনকে আদালতের হলঘর এবং নিম্ন আদালতগুলির বিচারকদের জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থাসংক্রান্ত পরিকাঠামো উন্নয়নের কেন্দ্রীয় সহায়তাপ্রাপ্ত কর্মসূচিতে কেন্দ্রীয় সরকারআর্থিক সহায়তা দিয়ে থাকে। এই কর্মসূচিতে উত্তর-পূর্ব এবং হিমালয় সংলগ্ন রাজ্যগুলিবাদে অন্যান্য রাজ্যের জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের মধ্যে ৬০ : ৪০ অনুপাতে ব্যয় ভাগাভাগি করা হবে। উত্তর-পূর্বএবং হিমালয় সংলগ্ন রাজ্যগুলির জন্য এই অনুপাত হবে ৯০ : ১০ এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্যকেন্দ্রীয় সরকার ১০০ শতাংশ ব্যয় বহন করবে। এই প্রকল্প রূপায়ণের ফলে সারা দেশেরজেলা এবং নিম্ন আদালতগুলিতে বিচারকদের জন্য ৩০০০ আদালত হল এবং ১,৮০০ বাসস্থাননির্মাণের কাজটি সম্পূর্ণ করা সম্ভব হবে। প্রকল্পের ওপর নজরদারি : বিচার বিভাগের পক্ষ থেকে অনলাইনে প্রকল্পের ওপরনজরদারি, কাজের অগ্রগতি এবং দেখভাল সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করার জন্য একটি ব্যবস্থাগড়ে তোলা হবে। নজরদারি সংক্রান্ত কমিটি বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিব এবং পূর্তবিভাগের আধিকারিকদের সঙ্গে দ্রুত কর্মসম্পাদন এবং যথাযথভাবে নির্মাণের কাজ করারজন্য নিয়মিত বৈঠক করবে। এছাড়া, কেন্দ্রীয় সরকারের দেওয়া অর্থ রাজ্য সরকারগুলি যাতেপূর্ত বিভাগকে অবিলম্বে প্রদান করে, সে বিষয়েও নজরদারি চালানো হবে। ১৯৯৩-৯৪ বর্ষ থেকে বিচারকদের জন্য পরিকাঠামোগতসুবিধা গড়ে তোলার কেন্দ্রীয় সহায়তাপ্রাপ্ত এই প্রকল্পটি রূপায়ণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার (১ আগস্ট) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে শেল তেল অথবা গ্যাস, কয়লাখনিতে জমে থাকা মিথেন প্রভৃতির মতো অচিরাচরিত হাইড্রোকার্বনের অনুসন্ধান ও তার ব্যবহারের নীতি অনুমোদিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী বর্তমানে দু ’ দিনের জন্য গুজরাট সফর করছেন। আজ কচ্ছের বিভিন্ন স্হানে কয়েকটি উন্নয়নমূলকপ্রকল্পের উদ্বোধন ও শিল্যান্যাস-ও করবেন তিনি । আগামীকাল অর্থাৎ ২৩ফেব্রুয়ারী গান্ধীনগরে আফ্রিকান উন্নয়ন ব্যাঙ্কের বার্ষিক বৈঠকগুলির সূচনাঅনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন শ্রী মোদী। ভাচাউ-তে একটিপাম্পিং স্টেশনের উদ্বোধনের পর একটি জনসভায় আমার যোগ দেওয়ার কথা আছে। আপনারামোবাইলে এই ঘটনা প্রত্যক্ষ করতে পারবেন। কচ্ছের প্রতি আমারএক বিশেষ টান রয়েছে। এখানকার মানুষজন খুবই ভালো এবং তাঁদের রয়েছে অদম্য একপ্রাণশক্তি। মঙ্গলবার গান্ধীনগরে @AfDB_Group . # AfDBAM2017- এরবৈঠকগুলির সূচনা অনুষ্ঠানে আমি অংশগ্রহণ করব। এই হামলার পিছনে যারা জঙ্গিদের মদত ও সহায়তা দিয়েছেন, তাদের সতর্ক করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এজন্য তাদের বড় মূল্য দিতে হবে। নিরাপত্তা বাহিনীগুলিকে জঙ্গি দমনের ক্ষেত্রেউপযুক্ত ব্যবস্হা গ্রহণে অবাধ ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী ভারতে অস্হিরতা তৈরি করার ভ্রম থেকে পাকিস্তানকে দুরে থাকার ব্যাপারেও হুঁশিয়ারী দেন। শ্রী মোদী আজ নতুন দিল্লী রেল স্টেশন থেক নতুন দিল্লী ও বারাণসীর মধ্যে বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের যাত্রা সূচনার পূর্বে এক জনসভায় ভাষণ দিচ্ছিলেন। বীর ও সাহসী এই সেনানীরা দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। নিকট আত্মীয়-পরিজনকে হারানো পরিবারগুলিকে দুঃখের এই মুহূর্তে আমার আন্তরিক সমবেদনা। এই পরিস্হিতিতে যোগ্য জবাব দেওয়ার প্রত্যাশা তৈরি হয়েছে, যা অত্যন্ত স্বাভাবিক। আমরা নিরাপত্তা বাহিনীগুলিকে পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি। আমাদের নিরাপত্তা বাহিনীগুলির সাহসিকতা ও বীরত্বে আমাদের পূর্ণ আস্হা রয়েছে। আমি আশাবাদী যে, দেশাত্ববোধের মানসিকতা সাধারণ মানুষকে আমাদের গোয়েন্দা সংস্হাগুলিকে সঠিক তথ্য প্রদানে প্রেরণা জোগাবে, যাতে আমরা সন্ত্রাসবাদকে নির্মূল করার লক্ষ্যে যাবতীয় প্রয়াসকে আরও সুসংবদ্ধ করতে পারি। আমি দেশবাসীক আশ্বস্ত করে বলতে চাই, যারা এই হামলার পিছনে রয়েছে এবং যারা ষড়যন্ত্র করেছে, তাদের উপযুক্ত শাস্তি দেওয়া হবে। এই পরিস্হিতিতে যারা আমাদের সমালোচনা করছেন আমি তাদের মানসিক অবস্হা বুঝি। সমালোচনা করার পূর্ণ অধিকার তাঁদের রয়েছে। অবশ্য, সকল বন্ধুর কাছে আমার অনুরোধ এই যে, অত্যন্ত সংবেদনশীল ও আবেগঘন এই পরিস্হিতিতে সমগ্র দেশ সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে পাশে রয়েছে। আমি স্পষ্ট বলতে চাই যে, ভারতে অস্হিরতা তৈরির লক্ষে দিবা স্বপ্ন দেখা তাদের বন্ধ করতে হবে। আমাদের এই প্রতিবেশী দেশটি আর্থিক দিক থেকেও হতাশাজনক অবস্হায় রয়েছে। তাদের এটা অবশ্যই জানা উচিত, যেকোন ধরনের পূর্ব পরিকল্পিত জঙ্গি হানার প্রচেষ্টাই ব্যর্থ হতে বাধ্য। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এটা বার বার প্রমাণিত হয়েছে যে, যারাই সন্ত্রাসে মদত দেওয়ার পথ অনুসরণ করেছে, তারা নিজেরাই ধ্বংস হয়ে গেছে। আমরা যে পন্হা অবলম্বন করেছি তা অগ্রগতি ও উন্নয়নের। ১৩০ কোটি ভারতীয় যেকোন ধরনের জঙ্গি হামলার সমুচিত জবাব দেবে। বিশ্বের বহু বড় দেশ এই জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করেছে, ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে এবং আমাদের প্রতি সমর্থন প্রকাশ করেছে। এই দেশগুলির প্রতি আমি কৃতজ্ঞ এবং সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে লড়াই তাদের সকলকে হাতে হাত রেখে কাজ করার আবেদন জানাই। সন্ত্রাসবাদের ভীতি তখনই দুর করা যাবে যখন এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে দেশগুলি একত্রিত হবে। বন্ধুগন, পুলওয়ামা জঙ্গি হামলার পর আমরা অত্যন্ত শোকাহত এবং আমাদের মধ্যে গভীর ক্ষোভের সঞ্চার হয়েছে। আমাদের সাহসী সেনানীরা তাদের জীবন উৎসর্গ করেছেন। শহীদ সেনানীরা দুটি স্বপ্ন নিয়ে বাঁচেন এবং তা হল দেশের সুরক্ষা তথা জাতির সমৃদ্ধি। আমি আমাদের শহীদ সেনানীদের বিনম্র শ্রদ্ধা জানাই, তাদের আর্শিবাদ প্রার্থনা করি এবং আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, দেশের স্বার্থে যারা জীবন উৎসর্গ করেছেন তাদের স্বপ্ন পূরণে আমরা কোনও রকম আপস করবো না। শহীদদের প্রতি আমাদের শ্রদ্ধার প্রতীক হিসাবে উন্নয়নের পথে আরো গতি সঞ্চার করতে আমাদের কঠোর পরিশ্রম অব্যাহত থাকবে। বন্দে মা তরম এক্সপ্রেস ট্রেনটি চালু করার পিছনে প্রত্যেক ইঞ্জিনিয়ার, কর্মী ও নকশা প্রণয়নের সঙ্গে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে আমার অভিন্দন। চেন্নাই-এ তৈরি এই ট্রেনটি নতুন দিল্লী থেকে বারাণসীর মধ্যে আজ তার যাত্রা সূচনা করছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মহাত্মা ফুলের ফুলের জন্মবার্ষিকীতে তাঁরপ্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “মহাত্মা ফুলের জয়ন্তীঅনুষ্ঠানে তাঁর প্রতি প্রণত হই। পাঞ্জাবেরভাতিন্ডায় আজ অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অফ মেডিকেল সায়েন্সেস (এইম্‌স)-এর শিলান্যাসকরলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এইউপলক্ষে প্রদত্ত এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে জাতির বিকাশে প্রয়োজন এক সামাজিকপরিকাঠামোর। এই কারণে ভালো স্কুল ও হাসপাতালের প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য।ভাতিন্ডায়এইম্‌স স্থাপনের কাজ সম্পূর্ণ হলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের মানুষ উপকৃত হবেন । পাকিস্তানের নাগরিকদের আহ্বানজানিয়ে তিনি বলেন, দুর্নীতি ও জাল নোটের বিরুদ্ধে তাঁদের দেশের প্রশাসনকে তৎপরহওয়ার দাবি জানাতে। শ্রীমোদী বলেন, কৃষকদের প্রয়োজনে পর্যাপ্ত পরিমাণ জলের যোগান নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয়সরকার সমস্তরকম কিছু করতেই আগ্রহী। যে জলের ওপর অধিকার রয়েছে শুধুমাত্র ভারতের, তাপাকিস্তানকে দেওয়ারকোন প্রশ্নই ওঠে না। পাশাপাশি,আপনারা ভারত ও মায়ানমারের হাজার হাজার বছরের সভ্যতা ও সংস্কৃতির আদান-প্রদান,ভূগোল ও ইতিহাসের প্রত্যাশা এবং সাফল্যের ঐতিহ্য বহন করছেন। আপনাদের সঙ্গে দেখা হলে আমি অনুভব করি যে, এখনআর প্রবাসী ভারতীয়দের ভারত সরকারের নানা বিভাগের সম্পর্ক নিছকই ‘ওয়ান ওয়ে ট্রাফিক’নয়। আমরা নিছকই দেশে সংস্কার অভিযান শুরু করিনি,আমরা রূপান্তরণ শুরু করেছি। আমরা শুধু পরিবর্তন আনছি, আমরা নতুন ভারত নির্মাণকরেছি। গত মাসে আমরা ভারতের স্বাধীনতার ৭০তম বর্ষপূর্তি পালন করেছি। এর ফলে, ভিসা ছাড়াই ১৮০ দিনের মধ্যে কিংবা তার বেশি সময়কালের ব্যবধানে ভারতে প্রবেশ এবং এক নাগাড়ে ৯০ দিন বা তার কম সময় থাকার ব্যাপারে আর কোন বাধা থাকবে না। দ্বৈত কর পরিহারের লক্ষ্যে ভারত ও পর্তুগালের মধ্যে চুক্তি সংশোধনের একপ্রস্তাবে আজ অনুমোদন দেওয়া হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেঅনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে । এই নতুন সংশোধন চুক্তিটিতেও আয় ওউপার্জনের ওপর কর ফাঁকির প্রবণতা রোধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থার সংস্থান থাকছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিহারের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতিশ কুমারের সঙ্গে ঐ রাজ্যের বিভিন্ন অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী ট্যুইট করে জানিয়েছেন যে, ঐ রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতিরমোকবিলায় কেন্দ্র বিহার সরকার’কে সবরকম সহায়তার আশ্বাস দিয়েছে আর পরিস্থিতির ওপরসদাসতর্ক নজর রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বিহারের বিভিন্ন অংশের বন্যাপীড়িতদের প্রতি আমারসহানুভূতি জানাই। পরিস্থিতির ওপর সদাসর্বদা নজর রাখা হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতির মোকাবিলায় কেন্দ্র বিহার সরকার’কে সবরকম সহায়তার আশ্বাসদিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বারানসীর মান্ডুয়াডিহ রেল স্টেশনেবারানসী ও পাটনার মধ্যে একটি ট্রেনের যাত্রা সূচনা করেন আজ। তিনি নানা উন্নয়নমূলকপ্রকল্পের কাজের সূচনা করেন এবং বারানসীর ডিজেল লোকোমোটিভ ওয়ার্কস্‌ ময়দানে একজনসভাতেও ভাষণ দেন। তিনি ফরাসী রাষ্ট্রপ্রধান ইম্যানুয়েল ম্যাকরঁ’কে সাদর অভ্যর্থনার জন্যকাশীর জনসাধারণকে ধন্যবাদ দেন। তিনি আবাসন ক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের প্রয়াসের প্রশংসা করেন এবং আরও বেশিসংখ্যক মানুষ যাতে আবাসন সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা পান, তা সুনিশ্চিত করতে বলেন । এই সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সভাস্থলে আয়োজিত ‘বর্জ্য থেকে সম্পদ’ শীর্ষক নানাপ্রয়াস তুলে ধরার প্রদর্শনীটিরও প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, বারানসীতে পর্যটনের অমিত সম্ভাবনা রয়েছে আর তাই এই নগরীকেপরিচ্ছন্ন রাখার জন্য সবরকম প্রয়াস নেওয়া দরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্প্রতি ঘোষিত আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প স্বাস্থ্যক্ষেত্রে রূপান্তর আনতে চলেছে। এটি গরিব মানুষদের সেরা মানের স্বাস্থ্য সুরক্ষাপ্রদান করবে বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় এই বৈঠক। প্রযুক্তিকে ভালো কাজে ব্যবহারের লক্ষ্যে দুই প্রধানমন্ত্রীই চেন্নাইয়ের ট্রিভিট্রন হেল্‌থ কেয়ার-এর উৎপাদন সংক্রান্ত ইউনিটটির উদ্বোধন করেন দূরসঞ্চার ব্যবস্থায়। মাননীয়প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো, সংবাদমাধ্যমেরসঙ্গে যুক্ত বন্ধুগণ, প্রথমেইআমি অ্যাসেহ-এর সাম্প্রতিক ভূমিকম্পে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর সমবেদনা জানাই। একমহান রাষ্ট্রের আপনি নেতৃত্ব দিচ্ছেন। বিশ্বের বৃহত্তম মুসলিম জনসংখ্যা-প্রধানএকটি রাষ্ট্র হিসেবে গণতন্ত্র, বৈচিত্র্য, বহুত্ববাদ এবং সামাজিক সম্প্রীতিরপ্রতীকই হল ইন্দোনেশিয়া। তাঁদের এই মূল্যবোধের সঙ্গে মিলে যায় আমাদের নিজস্বমূল্যবোধগুলিও। আমাদের এই দুটি দেশ ও সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে এক দীর্ঘ ঐতিহাসিক,বাণিজ্যিক তথা সাংস্কৃতিক বন্ধন রয়েছে। আমরা বাস করি এমন এক ভৌগোলিক অবস্থানে যাদ্রুত রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক তথা কৌশলগত পরিবর্তনের একটি কেন্দ্র হিসেবে কাজ করেচলেছে বর্তমান বিশ্বে। আপনার এই সফর আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কে উৎসাহেরসঙ্গেই এক নতুন মাত্রা যোগ করতে চলেছে। ভারত-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে শান্তি,সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে এবং তাকে একটি বিশেষ আকার দান করতে তানানাভাবে সহায়তা করেছে। আমাদের‘পূবে তাকাও নীতি’র এক মূল্যবান সহযোগী হিসেবে আমরা পেয়েছি ইন্দোনেশিয়াকে। এইদেশটি হল দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় এক বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ। অন্যদিকে আবার, বিশ্বেদ্রুত গতিতে বেড়ে ওঠা এক বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হল ভারত। দুটি বৃহৎ গণতান্ত্রিক দেশএবং ক্রমশ এগিয়ে চলা অর্থনীতি হিসেবে আমাদের মধ্যে রয়েছে অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত স্বার্থেরসম্পর্ক। প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতাকে অগ্রাধিকার দেওয়ার বিষয়েওএকমত হয়েছি আমরা। বিপর্যয় মোকাবিলা এবংপরিবেশ-সুরক্ষার লক্ষ্যে এই সহযোগিতাকে আমরা আরও জোরদার করে তুলতে আগ্রহী।নৌ-সহযোগিতা প্রশ্নে আমাদের যৌথ বিবৃতিতেই এই ক্ষেত্রটিতে আমাদের কর্মসূচির একটিরূপরেখা তুলে ধরা হয়েছে। আমাদের এই পারস্পরিক সহযোগিতা সন্ত্রাস, পরিকল্পিত অপরাধএবং মাদক ও মানবপাচারের মতো ঘটনার মোকাবিলার কাজেও সম্প্রসারিত হবে। দুটিদেশের মধ্যে চিন্তাভাবনা, বাণিজ্যিক প্রসার, মূলধনের যোগান এবং পরস্পরের নাগরিকদেরমধ্যে সম্পর্ককে জোরদার করে তোলার বিষয়েও সহমত প্রকাশ করেছি আমি এবং মাননীয়প্রেসিডেন্ট। দুটিবিকাশশীল দেশ হিসেবে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি পরিকাঠামো বিকাশ, বিনিয়োগের আদানপ্রদানসহ সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের। এই বিষয়টিতে শিল্প প্রসারেরসম্ভাবনাকে আরও প্রশস্ত করার লক্ষ্যে এবং শিল্প সংক্রান্ত সমঝোতাকে আরও গভীরে নিয়েযেতে সিইও-দের ফোরামটি নেতৃত্বদানের মতো অবস্থায় রয়েছে বলেই আমরা মনে করি। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে গত দু’দশক ধরে আমাদের যে মূল্যবান সহযোগিতারসম্পর্ক গড়ে উঠেছে তাকে আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার বিষয়টিকেও বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিআমরা। আমাদের এই সহযোগিতার সম্পর্ককে অটুট রাখতে বর্তমান মন্ত্রী পর্যায়ের কাঠামোয়যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এক বৈঠক আয়োজনের নির্দেশ দিয়েছি প্রেসিডেন্ট উইডোডো এবং আমি। আমাদেরদু’দেশের সমাজ ব্যবস্থায় যে শক্তিশালী সাংস্কৃতিক সম্পর্ক ও ঐতিহাসিক বন্ধন রয়েছেতা আমাদের দুটি রাষ্ট্রেরই এক মিলিত ঐতিহ্য। আমাদের এই ঐতিহাসিক সম্পর্কেরক্ষেত্রে গবেষণার কাজকে উৎসাহ ও গুরুত্বদানের প্রশ্নেও সম্মতি জানিয়েছি আমি এবংমাননীয় প্রেসিডেন্ট। দু’দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে ভারত ও ইন্দোনেশিয়া সম্পর্কেপঠনপাঠনের কাজে বিশেষ অধ্যাপকের পদ সৃষ্টির কাজটি দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার প্রশ্নেওসহমত জানিয়েছি আমরা। শুধু তাই নয়, বৃত্তি প্রদান ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচির প্রসারেওআমরা পারস্পরিক সম্মতি জানিয়েছি। দু’দেশের মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ এবং মানুষে-মানুষেসম্পর্ক প্রসারের গুরুত্ব কারোরই অজানা নয়। তাই, মুম্বাইয়ের সঙ্গে আকাশপথে সরাসরিযোগাযোগ স্থাপনের জন্য ‘গড়ুর ইন্দোনেশিয়া ইন্টারন্যাশনাল’-এর সিদ্ধান্তকে আমরাস্বাগত জানাই। এইসফরের জন্য আমি আরও একবার ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে একনতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে আপনার মতো আমিও আজ বিশেষভাবে আগ্রহী। আমার বক্তব্য শেষ করার আগেইন্দোনেশিয়ার সকল বন্ধুদের জানাই ধন্যবাদ। ধন্যবাদ,অনেক অনেক ধন্যবাদ আপনাদের সকলকেই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভারবৈঠকে বুধবার স্বাস্হ্য ও ওষুধ খাতে ভারত ও অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে সমঝোতা অনুমোদনকরেছে। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে সমঝোতার প্রধান বিষয়গুলি হল, বীজানুঘটিত রোগ এবং জনস্বাস্হ্য সংক্রান্ত আপৎকালীনঅবস্হার প্রতিকার উদাহরণ স্বরূপ, রেলের জন্য শক্তি উতপাদনের বিষয়টির উল্লেখ করা যায় যেখানে ১০০ শতাংশ পর্যন্ত প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই উপলক্ষে প্রদত্ত এক ভাষণে শ্রী মোদী বলেন, স্মার্ট নগরী গড়ে তোলার একটি পরিপূরক হিসেবে স্মার্ট পল্লী অঞ্চল গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করবে এই কর্মসূচিটি। এর আওতায় যে একগুচ্ছ উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হবে তা এক অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। এরফলে, একদিকে যেমন গ্রামীণ এলাকার উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে, অন্যদিকে সন্নিহিত অঞ্চলের সবকটি গ্রামেই জীবনযাত্রার মান নানা দিক থেকে উন্নত হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ এখন উন্নয়নের এক নতুন দিশা অনুসরণ করছে। এর একটি দৃষ্টান্ত হল রারবান মিশনের কাজ নয়াদিল্লি থেকে নয়, শুরু হচ্ছে ছত্তিশগড়ের রাজনন্দগাঁও জেলার কুরুভাট থেকে। গ্রাম ও আদিবাসী মানুষের কাছে এখন পৌঁছে যাচ্ছে কেন্দ্রীয় সরকার। উন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিক কাজকর্ম থেকে নিজেদের এলাকাকে মুক্ত রাখার জন্য গ্রামবাসী সহ বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। বিশ্বভারোত্তলন প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ পদক জয়ী “মীরাবাঈ চানু-র জন্য ভারত গর্বিত। আগামীকাল মুম্বাই যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে বান্দ্রার কুরলা কমপ্লেক্সে এম এম আর ডি এ গ্রাউন্ডে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কেন্দ্রটির উদ্বোধন করবেন তিনি। বিদেশি নেতৃবৃন্দের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেও মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী। ওরলির এন এস সি আই-তে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশ-বিদেশের বরিষ্ঠ নেতা ও শিল্পগোষ্ঠীর কর্তাব্যক্তিদের উপস্থিতিতে একটি সমাবেশেও ভাষণ দেবেন তিনি। এছাড়াও, নির্মাণ শিল্পের ক্ষেত্রে ভারতকে একটি পছন্দের স্থান হিসেবে বিশ্বের সামনে তুলে ধরারও চেষ্টা করা হবে এই সপ্তাহটিতে। সারা সপ্তাহ জুড়ে দেশ-বিদেশের শিল্পকর্তা, শিক্ষাবিদ এবং কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরের প্রশাসনিক কর্তা-ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ ও সংযোগ রক্ষার কাজও করা হবে। আগামীকাল মুম্বাই পৌঁছনোর অব্যবহিত পরেই বোম্বে আর্ট সোসাইটি ভবনের একটি নতুন কমপ্লেক্স উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ভাষণ দেবেন সেখানকার এক জনসমাবেশেও। মায়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর দাও আং সান সুকি ১৯৮৬ সালের মে মাসে সিমলার ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউটঅফ অ্যাডভান্সড স্টাডি-তে যে মূল গবেষণা প্রস্তাবটি ফেলোশিপ লাভের জন্য পেশ করেছিলেন তারই এক বিশেষ প্রতিলিপি আজ তাঁর হাতে উপহারস্বরূপ তুলে দেন মায়ানমার সফররত ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। হায়দ্রাবাদ রাজ্যের ভারতের সাথে সংযুক্তির সময় ভারতের একতার স্বার্থে যাঁরা আত্মবলিদান করেছেন, তাদের সকলের প্রতি সেলাম জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি। হায়দ্রাবাদ রাজ্যের ভারতের সাথে সংযুক্তির সময় সর্দার প্যাটেলের দৃষ্টান্তমূলক ভূমিকার কথাও তিনি স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “হায়দ্রাবাদ রাজ্যের ভারতের সাথে সংযুক্তির সময় ভারতের একতার জন্য যাঁরা নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছেন, তাঁদের সকলকে আমি প্রণতি জানাই। পারস্পরিকসহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে ইউরোপিয়ান সিকিউরিটিজ অ্যান্ড মার্কেট্‌স অথরিটি (এসমা)-এরসঙ্গে এক চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া(সেবি)-কে অনুমতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটন ডি সি-তে লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরি (লিগো)-র বিজ্ঞানীদের সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনার সময় লিগো প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নির্ধারণে ভারতের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মত প্রকাশ করেন ডঃ করডোভা। লিগো প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় বিজ্ঞানীদের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের উচিত ভারতের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পরিদর্শন করে সেখানকার ভারতীয় ছাত্রদের সঙ্গে আরও বেশি করে মত বিনিময় করা। ভারতে লেজার ইন্টারফেরোমিটার গ্র্যাভিটেশনাল ওয়েভ অবজারভেটরি (লিগো) স্থাপনের লক্ষ্যে এক চুক্তিপত্র বিনিময় অনুষ্ঠানেও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী। “ GSLV – MKIII D1/GSAT-19 -এর সফল উৎক্ষেপণের কাজে ইসরো-র যে সমস্ত বিজ্ঞানী একনিষ্ঠভাবে যুক্তছিলেন তাঁদের সকলকে জানাই আমার অভিনন্দন। ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো গান্ধী শান্তি পুরস্কার পাওয়ায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী এই প্রতিষ্ঠানকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, গান্ধী শান্তি পুরস্কার পাওয়ায় ইসরো-কে অভিনন্দন। প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে বিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রমের প্রতি এ এক উপযুক্ত সম্মান প্রদর্শন। সমস্ত ঘটনা জানিয়ে শরবতী দেবীর পুত্র চিঠি লেখেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে। প্রধানমন্ত্রী তখন তাঁর বাসভবনে আজআমন্ত্রণজানান শ্রীমতী শরবতী দেবীকে। ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী শ্রী জুহা সিপিলা প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে সোমবার টেলিফোন করেন। এদেশে পণ্য ওপরিষেবা কর জিএসটি’র ঐতিহাসিক ও সফল রূপায়ণের জন্য প্রধানমন্ত্রী সিপিলাপ্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীকে অভিনন্দন জানান। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুঙ্গ, আসিয়ান-ভারত স্মারক শীর্ষ সম্মেলনে আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাতে পেরে আমিআনন্দিত। আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্কের ২৫ বছর আমরা এখন উদযাপন করছি সত্যি কথা,কিন্তু আমাদের দু’দেশের মিলিত যাত্রার সূচনাকাল ছিল হাজার হাজার বছর পূর্বে। আসিয়ান নেতৃবৃন্দকে পাঁচ বছরের মধ্যে দ্বিতীয়বার ভারতে আমন্ত্রণ জানানোর একসুযোগ আমরা লাভ করেছি। আগামীকাল আমাদের সাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে আপনারাই উপস্থিতথাকবেন আমাদের সম্মানিত অতিথি হিসাবে। আমাদের এই আনন্দময় উদযাপনের মুহূর্তেআসিয়ানভুক্ত দেশগুলির ভাই-বোনেদের এই উপস্থিতি এক নজির বিহীন ঘটনা। এখানে আপনাদের এই সমবেত উপস্থিতি ১২৫ কোটি ভারতবাসীর হৃদয়কে স্পর্শ করেছে। ভারতের ‘পূবে তাকাও নীতি’র কেন্দ্রবিন্দুতে আসিয়ানের অবস্থান আমাদের কৌশলগতঅংশীদারিত্বের গুরুত্বকেই প্রতিষ্ঠিত করে। এই মহাকাব্যের মধ্য দিয়ে আমাদের যে সাধারণ সাংস্কৃতিক সম্পদ অর্জিত হয়েছে,তা তুলে ধরতে আসিয়ান দেশগুলির শিল্পীদের পরিবেশনায় একটি রামায়ণ উৎসবেরও আমরা আয়োজনকরেছি। বৌদ্ধবাদ সহ অন্যান্য প্রধান প্রধান ধর্মীয় ভাবধারা আমাদের মধ্যে এক নিবিড়বন্ধন গড়ে তুলেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অনেকগুলি দেশেই ইসলাম ধর্মের সঙ্গে রয়েছেভারতের বহু শতাব্দী প্রাচীন এক বিশেষ যোগসূত্র। আমাদের মিলিত ঐতিহ্যের উদযাপনের অঙ্গ হিসাবে আমরা যৌথভাবে প্রকাশ করেছিকতকগুলি স্মারক ডাকটিকিট-ও। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং অন্যান্য অতিথিবৃন্দ, আমাদের সকলের মুক্ত এবং বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনার মধ্যদিয়েই এই উদ্দেশ্য পূরণ সম্ভব বলে আমি মনে করি। পাঁচ বছর মেয়াদী কার্যপরিকল্পনার মধ্য দিয়েশান্তি, অগ্রগতি এবং মিলিত সমৃদ্ধির লক্ষ্যে আসিয়ান-ভারত অংশীদারিত্বের লক্ষ্যপূরণে আমরা এগিয়ে গেছি অনেক দূর। ২০১৬-২০২০ সময়কালের জন্য আমাদের তৃতীয়কার্যপরিকল্পনার রূপায়ণ যেভাবে প্রসার লাভ করেছে, তা নিঃসন্দেহে প্রশংসার দাবিরাখে। আসিয়ান-ভারত সহযোগিতা তহবিল, আসিয়ান-ভারত সবুজতহবিল এবং আসিয়ান-ভারত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তহবিলের সাহায্যে আমাদের দক্ষতা বৃদ্ধিসম্পর্কিত কর্মসূচিগুলি রূপায়িত হচ্ছে। নৌ-সম্পর্কিত পারস্পরিক সহায়তা এবং রাজনৈতিকসহযোগিতার প্রসারে আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে কাজ করে যেতে আমরা সংকল্পবদ্ধ। মানবতাবাদী কর্মপ্রচেষ্টা, বিপর্যয় মোকাবিলা,নিরাপত্তা সহযোগিতা এবং সামুদ্রিক পরিবহণ ক্ষেত্রে স্বাধীনতার মতো বিষয়গুলিসবসময়েই কাজ করে যাবে আমাদের নৌ-সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলিতে। আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গে জলে-স্থলে-অন্তরীক্ষে,সংস্কৃতি ও সভ্যতার আদান-প্রদানে এবং এই দেশগুলির জনসাধারণের পরস্পরের মধ্যেআদান-প্রদানের মাধ্যমে শতাব্দী প্রাচীন যে সম্পর্ক ভারতের গড়ে উঠেছে, এই শীর্ষসম্মেলন তারই এক ইতিবাচক পরিণতি। তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি আমাদের এই দেশগুলিরমধ্যে ডিজিটাল সংযোগ গড়ে তোলার মাধ্যমে এক নতুন মৈত্রীবন্ধনের জন্ম দেবে। আঞ্চলিক পর্যায়ে উচ্চক্ষমতাসম্পন্ন ফাইবার অপটিকনেটওয়ার্ক এবং প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলির সঙ্গে ডিজিটাল পদ্ধতিতে একটি জাতীয় গ্রামীণব্রডব্যান্ড ব্যবস্থা গড়ে তোলাও এই সহযোগিতার অন্তর্ভুক্ত। এই প্রকল্পের সাফল্য প্রতিফলিত হবেঅন্যান্য আসিয়ান রাষ্ট্রগুলিতেও। নীতি, নিয়ন্ত্রণ ও কারিগরি বিকাশ সম্পর্কিতশ্রেষ্ঠ ব্যবস্থাগুলি পরস্পরের মধ্যে ভাগ করে নেওয়ার জন্য টেলিযোগাযোগ এবংনেটওয়ার্ক প্রযুক্তি সম্পর্কে একটি প্রশিক্ষণ কর্মসূচিরও প্রস্তাব করেছে ভারত।আসিয়ান রাষ্ট্রগুলির তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রে কর্মরত পেশাদার কর্মীরাএরফলে উপকৃত হবেন। অর্থনৈতিক বিষয়গুলিতে আমাদের সহযোগিতা ও সমঝোতারমাত্রাকে আরও গভীরে নিয়ে যেতে ডিজিটাল পদ্ধতির আর্থিক অন্তর্ভুক্তি, বিনিয়োগেরপ্রসার এবং পরিকাঠামো সম্পর্কে আলাপ-আলোচনারও একটি প্রস্তাব আমি উত্থাপন করেছি। সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপে আর্থিক মদতদানেরমোকাবিলা করার বিষয়টিও আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র যেখানে আমরা সমবেতভাবে কাজ করেযেতে পারি। আমাদের ৭০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো বাণিজ্যিকলেনদেন গত ২৫ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ২৫ গুণ। ভারত এবং আসিয়ান রাষ্ট্রগুলির বিনিয়োগপরিস্থিতি এখন শুধুমাত্র সন্তোষজনকই নয়, উত্তরোত্তর তার প্রসারও ঘটে চলেছে। বাণিজ্যিক সম্পর্কের প্রসারে এবং বাণিজ্যিকগোষ্ঠীগুলির মধ্যে আলাপ-আলোচনার পরিবেশ গড়ে তুলতে আসিয়ান রাষ্ট্রগুলির সঙ্গে আমরানিরন্তরভাবে কাজ করে যাব। বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৈঠক তথা প্রদর্শনী,আসিয়ান-ভারত বাণিজ্য পরিষদের বৈঠক, বিজনেট সম্মেলন, স্টার্ট আপ উৎসব ও হ্যাকাথনএবং আইসিটি এক্সপো’র মতো সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির সাফল্য আমাদের মধ্যে উৎসাহের জোয়ারএনে দিয়েছে। সেখানকার স্থানীয় জনসাধারণতাঁদের বরণ করে নিয়েছেন আন্তরিকতার সঙ্গেই। আমাদের এই দেশগুলির জনসাধারণের মধ্যে নিবিড়সম্পর্কের বিষয়টি স্বীকৃতিলাভ করেছে এ মাসের প্রথম দিকে সিঙ্গাপুরে আয়োজিতআসিয়ান-ভারত প্রবাসী ভারতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে। আমাদের এই দেশগুলির সুপ্রাচীন সভ্যতা ও ঐতিহ্যেরঐতিহাসিক স্মারক স্তম্ভগুলির পুনর্নির্মাণ ও পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় যুক্ত রয়েছেভারত। কম্বোডিয়া, মায়ানমার, লাও পিডিআর এবং ভিয়েতনামেরমন্দিরগুলির সংরক্ষণ প্রচেষ্টার ক্ষেত্রেও এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের সুযোগলাভ করেছে ভারত। আসিয়ান-ভারত সংগ্রহশালাগুলি সম্পর্কে জ্ঞান ও তথ্যবিনিময়ের লক্ষ্যে যে ভার্চুয়াল পোর্টাল গড়ে তোলা হচ্ছে, তা থেকে মিলিত ঐতিহ্যের একবিশেষ পরিচয় পাওয়া যাবে। আমাদের স্মারক কর্মপ্রচেষ্টার একটি গুরুত্বপূর্ণ লক্ষ্য হ’ল, যুব সমাজ এবংআমাদের মিলিত ভবিষ্যৎ শক্তির এক বিশেষ উদযাপন। আমাদের যুবসমাজের জন্য যুব সম্মেলন, শিল্পী নিবাস, সঙ্গীত উৎসব এবং ডিজিটালবাণিজ্যের লক্ষ্যে স্টার্ট আপ উৎসবের আয়োজন এরই অঙ্গ-বিশেষ। ২৪ জানুয়ারি তারিখেযুব পুরস্কারদানের মাধ্যমে যুব সমাজের শক্তি ও উৎসাহকেই আমরা সমর্থন যোগানোরচেষ্টা করেছি। এশিয়ান দেশগুলির মহাসড়ক উন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত পেশাদার ব্যক্তিদের জন্যইন্ডিয়ান অ্যাকাডেমি অফ হাইওয়ে ইঞ্জিনিয়ার্স-এ এক বিশেষ প্রশিক্ষণ সূচিরও আমিপ্রস্তাব রাখছি। আন্তঃবিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে আরও বেশি মাত্রায় জ্ঞান ও তথ্যের বিনিময়েবিশ্ববিদ্যালয়গুলির একটি নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার প্রস্তাবও আমার রয়েছে। পরিশেষে, আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে এই স্মারক শীর্ষ সম্মেলনে উপস্থিতথাকার জন্য আমি আরও একবার ভারতীয় জনসাধারণের সঙ্গে মিলিতভাবে আপনাদের সকলকে বিশেষপ্রশংসা ও ধন্যবাদ জানাই। আমার বিশেষবন্ধু প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, সংবাদ মাধ্যমের বন্ধুগণ, প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং মিসেস সারা নেতানিয়াহু, তাঁদেরবাসভবনের দ্বার আমার জন্য আজ উন্মুক্ত করে দেওয়ায় আমি তাঁদের ধন্যবাদ জানাই। তাঁদের উদার এবং আন্তরিক আতিথেয়তায় আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। হলকাস্টে সেইভয়ঙ্কর সন্ত্রাসের ঘটনায় যে ৬০ লক্ষ ইহুদি তাঁদের প্রাণ হারিয়েছিলেন, তাঁদেরস্মৃতির উদ্দেশ্যে সম্মান জানাতে এবং তাঁদের স্মরণ করতে আমি মাত্র কিছুক্ষণ আগেইয়াদ ভাশেম মেমোরিয়াল মিউজিয়ামে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করে এসেছি। মানবতা এবং সভ্যতার মূল্যবোধে যাঁরা বিশ্বাসী, তাঁরা সকলেই যে তা রক্ষারজন্য ঐক্যবদ্ধভাবে সচেষ্ট হবেন, এই শিক্ষাই আমরা লাভ করি ইয়াদ ভাশেম থেকে। এইকারণেই আমাদের বর্তমান সময়কালকে যা নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত করে তুলেছে সেই সন্ত্রাস,উগ্রবাদ এবং হিংসার বিরুদ্ধে আমাদের অবশ্যই প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হয়ে রুখে দাঁড়ানোর সময়এখন উপস্থিত। আমাদের এইদু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের ইতিহাস বিগত কয়েক সহস্র বর্ষের।অর্থাৎ, যেদিন প্রথম ইহুদি সম্প্রদায়ের মানুষ ভারতের দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলে এসেপৌঁছোন, সেদিন থেকেই সূচনা এই পারস্পরিক সম্পর্কের। ভারতের ইহুদিরা হলেন, দু’দেশের মিলিত ইতিহাসের এক উজ্জ্বল ও সজীবযোগসূত্র। আমার এই ইজরায়েল সফর হ’ল দু’দেশের বিভিন্ন সম্প্রদায়গুলির মধ্যেসুপ্রাচীন মৈত্রী বন্ধনেরই এক বিশেষ উদযাপন। আমি আরও আনন্দিত যে, আগামীকালইজরায়েলে বসবাসকারী প্রচুর সংখ্যক ভারতীয় বংশোদ্ভূত প্রতিনিধিদের সঙ্গে একঅনুষ্ঠানে মিলিত হওয়ার সুযোগলাভ করতে চলেছি। ২৫ বছর আগেআমাদের দু’দেশের মধ্যে পূর্ণ কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের পর থেকে দ্রুত বিকাশ ঘটেছেআমাদের পারস্পরিক মৈত্রী সম্পর্কের। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে এক সাধারণ লক্ষ্য,বিশেষ উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত সম্পর্ক এবং দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থাকে সুরক্ষিত রাখারবাসনার মধ্যেই নিহিত রয়েছে আমাদের মিলিত কর্মপ্রচেষ্টার এক বিশেষ সুযোগ। আগামীদশকগুলিতে আমরা গড়ে তুলতে আগ্রহী এমন এক নিবিড় সম্পর্ক যা আমাদের অর্থনৈতিকসহযোগিতাকে পথ দেখাতে পারবে আরও নতুনভাবে। ভারত বর্তমানে বিশ্বে দ্রুততম গতিতেবিকাশশীল এক বৃহৎ অর্থনীতির দেশ। শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে যে সমস্ত হুমকিরআজ আমাদের মুখোমুখি হতে হয়েছে, তার মোকাবিলায় এক বলিষ্ঠ নিরাপত্তা বলয় গড়ে তোলারজন্য আমাদের দুটি দেশই সহযোগিতাবদ্ধ হতে আগ্রহী। এই লক্ষ্য পূরণে একটি সুনির্দিষ্টকার্যসূচি প্রণয়ন ও রূপায়ণের জন্য আমি সহযোগিতার সঙ্গেই কাজ করে যেতে আগ্রহীপ্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু’র সঙ্গে। আমি আরও একবার আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাইপ্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং মিসেস নেতানিয়াহু’কে আমাকে এইভাবে সাদর সম্ভাষণজানানোর জন্য। সৌরশক্তি সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ব্রহ্মা কুমারী প্রতিষ্ঠানের কর্মপ্রচেষ্টারবিশেষ প্রশংসা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দুর্নীতি দমনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনেরপ্রসারের ওপর বিশেষ জোর দেন তিনি। অন্যদিকে, যুক্তরাজ্যে যাঁরা বৈধভাবে সফর করছেন, তাঁদের ক্ষেত্রে উদারযুক্তরাজ্য ভিসা নীতি কার্যকরেরও সংস্থান থাকবে। কাতারের আমির শেখ তামিম বিম আহমেদ বিম খালিফা আল থানি আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী কাতারের সঙ্গে ভারতের সম্পর্ককে আরও নিবিড় করার ওপর গুরুত্ব দিয়ে বলেন, আমাদের ঘনিষ্ঠ এই দেশটির সঙ্গে আমরা প্রতিবেশীসুলভ মনোভাব নিয়ে চলি। শ্রী মোদী সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে দ্রুত মজবুত করার ক্ষেত্রে কাতারের আমিরের সুদক্ষ নেতৃত্ব ও ভূমিকার প্রশংসা করেন। দুই নেতাই আঞ্চলিক পরিস্হিতি নিয়ে আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন, এই অঞ্চল ও তার বাইরেও সন্ত্রাস শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে নিরবচ্ছিন্নভাবে গুরুতর বিপদের কারণ হয়ে উঠেছে। শ্রী মোদী যাবতীয় সন্ত্রাস এবং সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন বন্ধ করার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে অবিলম্বে প্রয়োজনীয় কার্যকর ব্যবস্হা গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন। গতকাল আবু-ধাবিতে অনুষ্ঠিত ইসলামিক সহযোগিতা সংগঠনের বিদেশমন্ত্রীদের ৪৬তম বৈঠকে সম্মানিত অতিথি হিসেবে ভারতের বিদেশমন্ত্রীর অংশগ্রহণের বিষয়টিকে উভয় নেতাই ঐতিহাসিক আখ্যা দেন। প্রমুখ স্বামী মহারাজের প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সমাজের প্রতি তাঁর সেবাকর্ম চিরস্মরণীয়হয়ে থাকবে। পরমপূজ্য প্রমুখ স্বামী মহারাজ ছিলেন আমার কাছে গুরুর মতোই শ্রদ্ধাভাজন। তাঁরসঙ্গে আলাপচারিতার কথা আমি কোনদিনই ভুলবো না। জাতীয় ও রাজ্য স্তরে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজের অগ্রগতিও পর্যালোচনা করা হবে। পরিসংখ্যানের ওপর নির্ভর করে পরিসংখ্যান মন্ত্রক জাতীয় রিপোর্ট পেশ করবে। এই রিপোর্টে কাজের উন্নয়ন, বিভিন্ন সমস্যা ও এর সমাধানের সুপারিশগুলি জাতীয় স্তরে পেশ করা হবে। ‘সবকা সাথ, সবকা বিকাশ’ – এর ওপর ভিত্তি করে দারিদ্র্য মোকাবিলায় বিভিন্ন পন্থা-পদ্ধতি নির্ণয় করা হবে। বিশ্ব সাংস্কৃতিক মহোৎসবে যোগ দিতে নয়াদিল্লিতে আসা বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের মানুষদের স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী পৃথিবীর ১৫০ টিরও বেশি দেশে আর্ট অব লিভিং ফাউন্ডেশনের মাধ্যমে অসাধারণ কাজ করার জন্য শ্রী শ্রী রবি শংকরকে অভিনন্দন জানান| বিশিষ্টতেলুগু কবি, গীতিকার ও লেখক শ্রী সি নারায়ণ রেড্ডি’র প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “শ্রী সি নারায়ণরেড্ডি’র প্রয়াণ সাহিত্য জগতে এক বিরাট ক্ষতি। বিভিন্ন প্রজন্মের মানুষের সঙ্গেতাঁর সাহিত্য কর্মের যোগ ছিল অবিচ্ছেদ্য। জার্মানির হ্যানোভার-এ আয়োজিত শিল্প প্রদর্শনী হ্যানোভার মেসির সময় ২৫ এপ্রিল, ২০১৬ তারিখে এই সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। ইউরোপে ফলিত শিল্প গবেষণায় পুরোধা সংস্থা হল, স্টেইনবিস জি এম বি এইচ। এই সমঝোতাপত্র হল, ভারতের মূলধনী দ্রব্য ক্ষেত্রে শিল্প প্রযুক্তি সহায়তায় একটি কাঠামোগত ব্যবস্থা। আজকিছুক্ষণ আগে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর কাছে এক টেলিফোন বার্তায় জম্মু ওকাশ্মীরের উরি-তে জঙ্গি হানার ঘটনায় উদ্বেগ ও সমবেদনা প্রকাশ করেন শ্রীলঙ্কারপ্রেসিডেন্ট মিঃ মৈত্রিপালা সিরিসেনা। প্রধানমন্ত্রীরসঙ্গে টেলিফোনে কথা বলার সময় তিনি সীমান্ত অঞ্চলে জঙ্গি হানার কঠোর নিন্দা করেনএবং এই ঘটনায় যাঁরা বলি হয়েছেন তাঁদের পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের পূর্ণাঙ্গ অধিবেশনে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। এই বৈঠকে আপনাদের সকলকে আমি স্বাগত জানাই। গতকাল অধিবেশনে যে সমস্ত আলোচনা হয়েছে এবং আজ এখানে আবার যে সমস্ত বিষয়ে আলোচনা হবে, তা এই অঞ্চলের দ্রুত বিকাশে বিশেষ সাহায্য করবে বলেই আমি আশা করি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিকাশ ও উন্নয়নে সাহায্য ও সমর্থন নিয়ে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদ এগিয়ে এসেছে জেনে আমি বিশেষভাবে আনন্দিত। এই অঞ্চলে বেশ কয়েকটি সংস্থা গড়ে তোলাএবং পরিকাঠামো প্রকল্প রূপায়ণেরকাজে এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের সূচনা ১৯৭২ সালে। সেই সময়কাল থেকেই উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিকাশে সচেষ্ট রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানটি। জনসাধারণের ক্রমবর্ধমান আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে কতটা সাফল্য অর্জিত হয়েছে সে সম্পর্কে পর্যালোচনা করে দেখা উচিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের। পরিষদকে আরও সংহত ও উন্নীত করে তোলা প্রয়োজন বলে আমি মনে করি। প্রয়োজনীয় জ্ঞান, দক্ষতা ও সহায়সম্পদের যোগানের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির স্বার্থে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদকে একটি অত্যাধুনিক সহায়সম্পদ কেন্দ্র রূপে গড়ে তোলার বিষয়টি আপনারা ভেবে দেখতে পারেন। উন্নয়ন পরিকল্পনার কাজে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের রাজ্য ও কেন্দ্রীয় মন্ত্রকগুলিকে সহায়তাদানের পাশাপাশি বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের লক্ষ্যে এক বিশেষ ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়টিও বিবেচনা করে দেখতে পারে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদ। এর সুবাদে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সুপ্রশাসন ও সুপরিচালন ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। জীবিকার্জন, শিল্পোদ্যোগ, ভেঞ্চার তহবিল, স্টার্ট আপ এবং দক্ষতা উন্নয়নের মতো ক্ষেত্রগুলিতেও বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া উচিত পরিষদের। কারণ, এ সমস্ত কিছুই কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে সাহায্য করবে। ‘পূর্বের জন্য কাজ করো’ – এই নীতি গ্রহণের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বের বিকাশ ও উন্নয়নে সরকার বিশেষভাবে আগ্রহী। নীতির একটি অঙ্গ হিসেবে রেল,সড়ক, টেলিযোগাযোগ, বিদ্যুৎ ও জলপথ ক্ষেত্রগুলির উন্নয়নের মধ্য দিয়ে এই অঞ্চল যাতে আর কোনভাবেই দেশের অন্যকোন অংশের থেকে বিচ্ছিন্ন না থাকে, সেদিকে বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি আমরা। দেশের পশ্চিমাঞ্চল যদি উন্নয়নের পথে এগিয়ে যেতে পারে, অন্যান্য অঞ্চলও যদি বিকাশ লাভ করে, তাহলে উন্নয়নের দিক থেকে উত্তর-পূর্বাঞ্চলেরপিছিয়ে থাকার কোন কারণ নেই। উত্তর-পূর্বাঞ্চল সহ দেশের সবক’টি অঞ্চল যদি উন্নয়নের পথে এগিয়ে যায়, তাহলে ভারতও এগিয়ে যাবে দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে। কৌশলগত বিভিন্ন কারণে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের গুরুত্ব আমাদের কাছে অনেকখানি। তাই দেশের অন্যান্য উন্নত অঞ্চলের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে এই অঞ্চলটিরও বিকাশ ও উন্নয়ন একান্ত প্রয়োজন। বর্তমান বাজেটে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য আমরা সংস্থান রেখেছি ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশি। এই অঞ্চলের বিকাশে বরাদ্দকৃত অর্থের যাতে সদ্ব্যবহার হয়, তা নিশ্চিত করতে আমরা সচেষ্ট। প্রতিযোগিতামূলক অথচ সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থায় আমরা বিশ্বাসী। শক্তিশালী যে রাজ্যগুলি আরও এগিয়ে যেতে চায় তাদের যথেষ্ট মাত্রায় ক্ষমতা ও সহায়সম্পদ দেওয়া প্রয়োজন। অন্যদিকে, যে রাজ্যগুলি এখনও ততটা শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেনি, সেগুলিকে দিতে হবে প্রয়োজনীয় সাহায্য ও সহায়তা। মুখ্যমন্ত্রীদের নিয়ে গঠিত এক কমিটির প্রতিবেদনের ওপর ভিত্তি করে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির জন্য কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে ৯০:১০ এবং অন্যান্য কর্মসূচিগুলির ক্ষেত্রে ৮০:২০ অনুপাতে সাহায্য ও সহযোগিতা দিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্তে আমরা অবিচল রয়েছি। সাম্প্রতিক অতীতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প আমরা স্থাপন করেছি অসমে – ব্রহ্মপুত্র ক্র্যাকার অ্যান্ড পলিমার লিমিটেড এবং রুমালিগড় রিফাইনারি লিমিটেডের ওয়াক্স ইউনিট। এই দুটি বড় প্রকল্প থেকে ব্যাপক কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলিতে। এই প্রকল্প সম্পূর্ণ করতে বহু সময় ব্যয় হয়েছে। আমাদের এখন নিশ্চিত করতে হবে যে সঠিক সময়ে এবং ব্যয় বেড়ে যাওয়ার আগেই প্রকল্পগুলির কাজ যাতে সম্পূর্ণ হয়। একমাত্র তখনই এই সমস্ত প্রকল্পের প্রকৃত সুফল আমরা উপলব্ধি করতে পারব। প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে আমরা সড়ক ও রেলপথ স্থাপন করতে চলেছি। কারণ, তা এই অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশকে আরও ত্বরান্বিত করবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য আমরা ‘জাতীয় মহাসড়ক ও পরিকাঠামো উন্নয়ন নিগম’ নামে এক বিশেষ মহাসড়ক নির্মাণ সংস্থা গড়ে তুলেছি যা নথিবদ্ধ হয় ২০১৪-র ১৮ জুলাই। তখন থেকে এর শাখা অফিস খোলা হয়েছে উত্তর-পূর্ব ভারতের সবক’টি রাজ্যে। সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে এই অঞ্চলের জমি ও জলবায়ু পরিস্থিতির দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। তাই, এই অঞ্চলে সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে যথোপযুক্ত প্রযুক্তি যাতে ব্যবহার করা যায় সে সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। সাম্প্রতিককালে বাংলাদেশের সঙ্গে সহযোগিতায় আমরা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য এক উন্নত ইন্টারনেট সংযোগ কর্মসূচি রূপায়িত করেছি। এই ব্যবস্থায় ১০ জিবি-র মতো ব্যান্ডউইড্‌থ পাওয়া যাবে এই অঞ্চলের জন্য। উত্তর-পূর্ব ভারতকে অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে বিশেষভাবে যুক্ত করবে এই কর্মসূচিটি। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের আটটি রাজ্যে প্রায় ১০ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে বিদ্যুৎ সংবহন প্রকল্প গড়ে তোলার কাজে হাত দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলশ্রুতিতে এই অঞ্চলের আরও বহু এলাকায় পৌঁছে যাবে বিদ্যুতের সুযোগ। ১০ হাজার কোটি টাকার মতো ব্যয়ে এই অঞ্চলে এক বড় ধরনের সম্প্রসারণ প্রকল্পের কাজ শুরু করেছে ভারতীয় রেল। ২০১৪-র নভেম্বরে অরুণাচল প্রদেশ ও মেঘালয়কে নিয়ে আসা হয়েছে দেশের রেল মানচিত্রে। ত্রিপুরার আগরতলাকেও যুক্ত করা হয়েছে ব্রডগেজ রেললাইনের মাধ্যমে। উত্তর-পূর্ব ভারতের সবক’টি রাজ্যকেই অনতিবিলম্বে রেল মানচিত্রে নিয়ে আসার জন্য আমরা বিশেষভাবে সচেষ্ট রয়েছি। এছাড়াও, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে ১৩২ কিলোমিটার দীর্ঘ এক তৃতীয় বিকল্প সংযোগ রুট (নিউ ময়নাগুড়ি-যোগিঘোপা)চালু করা হয়েছে। এই অঞ্চলের সবক’টি রাজ্য নৈসর্গিক সৌন্দর্য এবং ঐতিহাসিক, সাংস্কৃতিক তথা সুপ্রাচীন ঐতিহ্যে আশীর্বাদধন্য। এ সমস্ত কিছুই এই অঞ্চলের পর্যটনের বিকাশে বিশেষভাবে সহায়ক। শুধু তাই নয়, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের আয় ও উপার্জন বৃদ্ধিতেও তা বিশেষভাবে সাহায্য করতে পারে। পর্যটন মন্ত্রক উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য একটি পর্যটন সার্কিট চিহ্নিত করেছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সবক’টি রাজ্য নিজের নিজের এলাকায় এই ধরনের বিপিও চালু করার সুযোগ অবশ্যই গ্রহণ করবে। এর ফলে, একদিকে যেমন এই অঞ্চলের সমৃদ্ধি ঘটবে, অন্যদিকে তেমনই তরুণ ও যুবকদের জন্য প্রসারিত হবে কর্মসংস্থানের সুযোগ। উত্তর-পূর্ব ভারত হল ফলমূল, শাকসব্জি, ফুল, সুগন্ধি ও ভেষজ গাছাপালার আকর স্থান। এ সমস্ত কিছুই জৈব কৃষি পদ্ধতিতে গড়ে ওঠে। তাই, জৈব পদ্ধতিতে কৃষিকর্মের বিষয়টি যদি আমরা আমাদের উন্নয়নের কৌশলের সঙ্গে যুক্ত করতে পারি, তাহলে বিশেষভাবে উপকৃত হবে এই অঞ্চলটি। কয়েক মাস আগে সিকিমকে দেশের প্রথম জৈব কৃষি রাজ্য বলে ঘোষণা করার জন্য ঐ রাজ্যের এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সুযোগ ঘটেছিল আমার। শুধু তাই নয়, উত্তর-পূর্ব ভারত হয়ে উঠতে পারে সারা দেশের এক খাদ্যভাণ্ডার। উত্তর-পূর্ব ভারতে রয়েছে এক বিশাল সংখ্যক গ্রামীণ জনসাধারণ। শুধুমাত্র অসমের কথাই যদি আমরা ধরি, ঐ রাজ্যের ৮৬ শতাংশ মানুষই বাস করেন গ্রামে। দেশের পল্লী অঞ্চলে আর্থ-সামাজিক ও প্রাথমিক উন্নয়নের চাহিদা পূরণে আমরা চালু করেছি শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জি মিশন। এই অঞ্চলের রাজ্যগুলির উচিত মিশনের এই কর্মসূচিগুলি গ্রহণের মধ্য দিয়ে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের গ্রামীণ এলাকার বিকাশ ও উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করা। পরিশেষে, শিলং-এ সাফল্যের সঙ্গে পূর্ণাঙ্গ বৈঠক পরিচালনার জন্য উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় পরিষদের চেয়ারম্যান সহ সমস্ত সদস্যকেই জানাই আমার আন্তরিক কৃতজ্ঞতা। 1এই বৈঠকের উদ্যোগ-আয়োজনের জন্য আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই মেঘালয়ের রাজ্যপাল ও মুখ্যমন্ত্রীকে। বৈঠকের বিভিন্ন আলোচনা ও মতবিনিময় এই অঞ্চলের বিকাশ ও উন্নয়নে পথ দেখাবে বলে আমি নিশ্চিত। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লির পুসা ক্যাম্পাসে আইএআরআইমেলার ময়দানে আয়োজিত কৃষি উন্নতি মেলা পরিদর্শন করেছেন। তিনি এই মেলার থিমপ্যাভেলিয়ন এবং জৈবিক মেলা কুম্ভ-ও ঘুরে দেখেন। প্রধানমন্ত্রী এদিন দেশের ২৫টিকৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করেন। এছাড়া, জৈব কৃষি পণ্যেরবিপণনের জন্য তিনি একটি ই-মার্কেটিং পোর্টালেরও উদ্বোধন করেন। তিনি এই অনুষ্ঠানেকৃষি কর্মন পুরস্কার এবং পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায় কৃষি প্রোৎসাহন পুরস্কার প্রদানকরেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইধরনের কৃষি উন্নতি মেলা নতুন ভারত গড়ে তোলার পথ সুগম করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণভূমিকা নেয়। তিনি বলেন, আজ নতুন ভারতের দুই অগ্রদূত কৃষক এবং বিজ্ঞানীদের সমাবেশেযুগপৎ কথা বলার সুযোগ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষক ও বিজ্ঞানীদের দেশে কৃষিরূপান্তরের লক্ষ্যে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি ক্ষেত্রে কাজের অগ্রগতির স্বীকৃতিতে পুরস্কার প্রাপকরাজ্য মেঘালয়ের নাম বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার পর থেকে কৃষি ক্ষেত্রে অগ্রগতির জন্য কৃষকদেরকঠোর পরিশ্রম ও দৃঢ় মানসিকতার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন যে, আজ আমাদের দেশেখাদ্যশস্য, ডালশস্য, ফল, সব্জি এবং দুধের রেকর্ড উৎপাদন হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এইসব চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সরকার একসার্বিক দৃষ্টিভঙ্গীতে কাজ করে যাচ্ছে। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করা এবং তাঁদের জীবনসহজতর করে তোলাই এই কাজের লক্ষ্য। এই লক্ষ্যে কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা দেশে ১১ কোটিসয়েল হেলথ্‌ কার্ড কৃষকদের দেওয়া হয়েছে। কৃষি ক্ষেত্রে ব্যবহৃত ইউরিয়ার ওপর নিমেরপ্রলেপ লাগানোর ফলে সার বাবদ কৃষকদের ব্যয় কমেছে এবং ফসলের উৎপাদন বেড়েছে। শ্রী মোদী বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার মাধ্যমে কৃষি বিমারপ্রিমিয়াম হ্রাস করা হয়েছে, বিমার ঊর্দ্ধ সীমা তুলে দেওয়া হয়েছে এবং বিমা বাবদকৃষকদের দাবি মতো অর্থ প্রদানের পরিমাণ অনেকটাই বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঁচাইযোজনার মাধ্যমে দেশের সব জমিতে সেচের কথা ভাবা হয়েছে বলে তিনি জানান। দেশের বকেয়াসেচ প্রকল্পগুলি সম্পূর্ণ করার জন্য ইতিমধ্যেই ৮০,০০০ কোটি টাকা ব্যয় করা হচ্ছে। কিষাণ সম্পদ যোজনা নামে এক কর্মসূচির মাধ্যমে কৃষকদের জন্য ক্ষেত থেকেবাজার পর্যন্ত সরবরাহ শৃঙ্খল জোরদার করা এবং আধুনিক কৃষি পরিকাঠামো সৃষ্টি করারউদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, সাম্প্রতিক বাজেটে ঘোষিত ‘অপারেশন গ্রিনস্‌’প্রকল্পের মাধ্যমে সব্জি, ফল বিশেষ করে টমেটো, পেঁয়াজ ও আলু চাষিরা উপকৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রী জানান যে, কৃষকদের জন্য আধুনিক বীজ, পর্যাপ্ত বিদ্যুৎ সরবরাহএবং সহজে বিপণনের ব্যবস্থা সুনিশ্চিত করতে সরকার কাজ করে চলেছে। তিনি বলেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার সমস্ত বিজ্ঞাপিত ফসলের ন্যূনতম সমর্থন মূল্যসংশ্লিষ্ট ফসলগুলির উৎপাদন ব্যয়ের কমপক্ষে দেড় গুণ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। উৎপাদনব্যয়ের হিসাবের জন্য শ্রম, কৃষি যন্ত্রপাতি ভাড়া, বীজ ও সারের মূল্য, রাজ্যসরকারকে প্রদেয় রাজস্ব, কার্যকর পুঁজির ওপর সুদ এবং লিজ প্রাপ্ত জমির ভাড়ার মতোবিষয়গুলিকে বিবেচনা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষি বিপণনের ক্ষেত্রে সংস্কারের লক্ষ্যে সার্বিকপদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। গ্রামীণ খুচরো বাজারগুলিকে পাইকারি এবং বিশ্ব বাজারেরসঙ্গে যুক্ত করা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। সাম্প্রতিককেন্দ্রীয় বাজেটে গ্রামীণ খুচরো কৃষি বাজারের কথা অনুমোদন করা হয়েছে। ২২,০০০গ্রামীণ হাটকে প্রয়োজনীয় পরিকাঠামো সহ উন্নীত করা হবে এবং কৃষি পণ্য বিপণন কমিটি ওই-ন্যাম মঞ্চের সঙ্গে সংযুক্ত করা হবে। প্রধানমন্ত্রী কৃষক উৎপাদক সংগঠন গড়ে তোলার গুরুত্বের ওপরও জোর দেন। শ্রী মোদী বলেন, সবুজ বিপ্লব ও শ্বেত বিপ্লবের পাশাপাশি আমাদের জৈব বিপ্লব,জল বিপ্লব, নীল বিপ্লব এবং মিষ্টি বিপ্লবের ওপর জোর দিতে হবে। কৃষি বিজ্ঞানকেন্দ্রগুলি এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে তিনি মন্তব্য করেন। মৌমাছি পালন কিভাবে কৃষকদের জন্য অতিরিক্ত আয়ের গুরুত্বপূর্ণ উৎস হতে পারে,প্রধানমন্ত্রী তার কথাও উল্লেখ করেন। অনুরূপভাবে, তিনি সৌরকৃষির সুবিধার কথাওবলেন। গত তিন বছরে দেশের কৃষকদের মধ্যে ২.৭৫ লক্ষ সৌর পাম্প বিতরণ করা হয়েছে বলেতিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন কম্পোস্ট এবং পশু মল থেকে জৈব গ্যাস উৎপাদনেরলক্ষ্যে গোবর ধন যোজনা প্রসঙ্গেও উল্লেখ করেন। শস্যের অবশিষ্টাংশ পোড়ানো ক্ষতিকারক প্রভাবের প্রসঙ্গ উত্থাপন করেপ্রধানমন্ত্রী বলেন, এগুলিকে না পুড়িয়ে তার পরিবর্তে যন্ত্রের মাধ্যমে মাটিতেমিশিয়ে দেওয়া হলে, তা মাটির উর্বরতার পক্ষে উপকারি ভূমিকা নিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার পর্যাপ্ত পরিমাণে কৃষি ঋণ দেওয়ার ব্যবস্থারলক্ষ্যে কাজ করছে। কৃষি উন্নতি মেলার মতো এ ধরনের অনুষ্ঠান দেশের দূরদূরান্তে আয়োজন করার ওপরপ্রধানম্নত্রী জোর দেন। তিনি এই ধরনের অনুষ্ঠানের প্রভাব বিশ্লেষণের কথাও বলেন। মাননীয় সভাপতি মহোদয়, সংসদের পক্ষ থেকে, দেশবাসীর পক্ষ থেকে আপনাকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আজ ১১ আগস্ট, ইতিহাসে এই তারিখটির গুরুত্ব অপরিসীম। আজকের দিনে মাত্র ১৮বছর বয়সী স্বাধীনতা সংগ্রামী ক্ষুদিরাম বসু’কে ফাঁসিতে ঝোলানো হয়েছিল। দেশেরস্বাধীনতা সংগ্রামে কত লড়াই হয়েছে, কত স্বাধীনতা সংগ্রামী প্রাণবিসর্জন দিয়েছেন,তাঁদের স্মৃতি আমাদেরকে স্মরণ করায় যে, তাঁদের স্বপ্ন সফল করতে আমাদের সকলেরই কতবড় দায়িত্ব রয়েছে। অনেক বছর ধরে আমার তাঁর সঙ্গে কাজ করার সৌভাগ্যহয়েছে। গ্রাম, গরিব ও কৃষকদের প্রতিটি বিষয়কে অনুপুঙ্খ অধ্যয়ন করে তবেই তিনি নিজেরইনপুট দেন। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় তিনি ছিলেন নগরোন্নয়ন মন্ত্রী। কিন্তু আমি অনুভবকরেছি যে, মন্ত্রিসভায় নগরোন্নয়ন নিয়ে তিনি যত কথা বলতেন, গ্রামোন্নয়ন নিয়েও ততটাইগুরুত্ব দিয়ে কৃষকদের বিষয়গুলি তুলে ধরতেন। এটা তিনি অত্যন্ত আন্তরিকভাবে করতেন;তাঁর পারিবারিক প্রেক্ষিতের কারণেই হয়তো তিনি তা করতেন। এমন সময়ে ভেঙ্কাইয়াজী উপরাষ্ট্রপতি পদে আসীন হয়েছেন, যখন সারা পৃথিবীর সামনেআমাদের গণতন্ত্রের পরিপক্কতাকে তুলে ধরার প্রয়োজন অনুভূত হচ্ছে। আজ ভেঙ্কাইয়াজীকে এই গরিমাময় পদে আসীন হতে দেখে একটি কবিতার লাইন আমারমনে পড়ছে – প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতারজন্য ভারত ও ম্যাসাডোনিয়ার মধ্যে একটি সমঝোতা স্মারক (মউ) স্বাক্ষরের অনুমোদন দিল| রাজস্থানের থর জেলার পোখরানে আজ ভারতীয় বিমানবাহিনীর তৎপরতা ও কর্মকুশলতার এক প্রদর্শন প্রত্যক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই মহড়া ও প্রদর্শনীতে বিমানবাহিনীর প্রতিরক্ষা সংক্রান্তকাজে লক্ষ্যবস্তুর ওপর আক্রমণ এবং কর্মতৎপরতার বিষয়টি পুরোপুরি দেখানো হয়। বিমান প্রতিরক্ষা সম্পর্কিতদক্ষতা, নেট অপারেশনের ক্ষেত্রে পারদর্শিতা, সবরকমের আবহাওয়াতে লক্ষ্যবস্তুর ওপর আক্রমণ এবং শত্রুপক্ষের আক্রমণ প্রতিহত করার বিষয়টি এই মহড়া ও প্রদর্শনীতে তুলে ধরা হয়। ১৯৮৬ এবং১৯৯৩ সালে ভারত সফরে এসেছিলেন মিঃ হেলমুট কোল। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “রাষ্ট্রপতি @ashrafghani, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও রাষ্ট্রপতি সিরিসেনা`র সঙ্গে আমার কথা হয়েছে। ক্রিকেট বিশ্বকাপের জন্য তাঁদেরকে আমার শুভেচ্ছা জানিয়েছি। ৫টি সার্ক দেশ বিশ্বকাপ খেলছে এবং এরা খুবই উৎসাহিত। আমি নিশ্চিত যে, বিশ্বকাপে খেলোয়াড়সুলভ মানসিকতার প্রতিফলন ঘটবে যা ক্রীড়া অনুরাগীদেরও আনন্দ দেবে। আমাদের অঞ্চলে ক্রিকেট মানুষকে একত্রিত করে এবং সৌজন্যবোধ বাড়িয়ে তোলে। আশা করি, সার্ক অঞ্চলের খেলোয়াড়রা গভীর আবেগ নিয়ে খেলবে এবং এই অঞ্চলের জন্য সুনাম বাড়াবে। আমাদের সম্পর্ককে আরও মজবুত করতে নতুন বিদেশ সচিবকে শীঘ্রই সার্ক সফরে পাঠানো হবে”। এই অনুষ্ঠানের মধ্যে দিয়ে রাশিয়ায় ভারতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের জনপ্রিয়তা এবং আন্ত:সাংস্কৃতিক বোধ-এর গুরুত্ব তুলে ধরা হয়। অংশগ্রহণকারী সব শিল্পীরা মঞ্চে এরপর একযোগে শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর ‘গীত নয়া গাতা হুঁ’ কবিতার গীতিময়রূপ পরিবেশন করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ার এতো সংখ্যক লোক ভারতীয় সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সম্পর্কে তাদের ভাললাগা প্রকাশ করেছে, এটা আমাদের পক্ষে গর্বের বিষয়। ঈদ-উল-মিলাদ এবং বড়দিন উপলক্ষ্যে জনগনকে শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামীকাল (২৫ ডিসেম্বর) প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীরও জন্মদিন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাশিয়ায় ভারতীয় সংস্কৃতিকে জনপ্রিয় করে তুলতে লাগাতর উৎকৃষ্ট উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। রাশিয়ার ২০০টি স্থানে আন্তর্জাতিক যোগা দিবস পালনের কথাও তিনি উল্লেখ করেছেন। উভয় দেশের মধ্যে অতীতকাল থেকে বাণিজ্য এবং পান্ডিত্যপূর্ণ বিষয়ে যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাধা-বিপত্তির মাঝেও রাশিয়া সবসময়ই ভারতের পাশে দাঁড়িয়েছে। তিনি বলেন, যখন আমরা যুদ্ধের মুখোমুখি হয়েছি, সেসময় রাশিয়া আমাদের সহায়তা করেছে এবং ভারতীয় জওয়ানরা বিজয়ী হয়েছে। তিনি বলেন, দুদেশের মধ্যে এটা হল শক্তির সম্পর্ক, কিন্তু এই শক্তি হচ্ছে বন্ধুত্বের শক্তি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অর্থনৈতিক ক্রিয়াকলাপের জন্য সারা বিশ্বে আজ ভারত প্রশংসিত হচ্ছে। আশাপূর্ণ দৃষ্টিতে সমগ্র বিশ্ব তাকাচ্ছে ভারতের দিকে এবং বিনিয়োগকারীরা ভারতে বিনিয়োগে আশ্বস্ত বোধ করছে। তিনি বলেন, এই বিনিয়োগের মধ্যে দিয়ে ভারতে বিশ্বমানের পরিকাঠামো তৈরি হবে এবং ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। তিনি বলেন, সারা বিশ্ব আজ ভারতকে কেবলমাত্র একটি বাজার হিসেবেই না, বরং একটি সম্ভাবনাময় ম্যানুফেকচারিং হাব হিসেবে দেখছে। আসাম, বিহার,হিমাচল প্রদেশ, ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর এবংউত্তরাখন্ডের চিহ্নিত অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীগুলিকে কেন্দ্রীয় তালিকায়অন্তর্ভূক্তি ও সংশোধনের বিষয়টি বিজ্ঞাপিত করার একটি প্রস্তাব বুধবার অনুমোদিত হলপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভারবৈঠকে। ইতিমধ্যে আসাম,বিহার, হিমাচল প্রদেশ, ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ, জম্মু ও কাশ্মীর এবংউত্তরাখন্ডের আরও কয়েকটি বর্ণ ও সম্প্রদায়কে অন্তর্ভূক্তি এবং এ সম্পর্কিত তালিকাসংশোধনের প্রস্তাব পেশ করা হয় সরকারের কাছে। এরই ফলশ্রুতিতে জম্মু ও কাশ্মীর সহ৮টি রাজ্যের মোট ২৮টি পরিবর্তনের সুপারিশ করা হয় জতীয় কমিশনের পক্ষ থেকে। হায়দরাবাদেসর্দার বল্লভভাই প্যাটেল জাতীয় পুলিশ অ্যাকাডেমি’তে শনিবার পুলিশের ডিজি ওআইজি-দের এক সম্মেলনে যোগ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্মেলনেভাষণদানকালে ২৬ নভেম্বর দিনটির কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এই দিনটিতেই জঙ্গিরাহামলা চালিয়েছিল মুম্বাইতে। সাহসের সঙ্গে সেই ঘটনার মোকাবিলা করেছিল পুলিশ বাহিনী।যে ৩৩ হাজার পুলিশ কর্মী কর্তব্যের খাতিরে শহীদ হয়েছেন, তাঁদের কথাও প্রসঙ্গতস্মরণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীবলেন, এই বার্ষিক সম্মেলনের উদ্যোগ আয়োজন ও পরিচালনার ক্ষেত্রে এক আমূল পরিবর্তনঘটেছে। বর্তমানে এই সম্মেলন হয়ে উঠেছে অভিজ্ঞতা বিনিময়ের এক বিশেষ মঞ্চ, যা থেকেনীতি পরিকল্পনার কাজে প্রচুর প্রস্তাব ও পরামর্শ লাভ করা যায়। পুলিশ বাহিনীরকর্মতৎপরতা বৃদ্ধির জন্য যে সমস্ত বিষয়ের ওপর প্রস্তাব ও পরামর্শকে গ্রহণযোগ্য বলেমনে করা হবে, তার দ্রুত বাস্তবায়নের ওপর বিশেষ জোর দেন তিনি। প্রশিক্ষণেরপ্রশ্নে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পুলিশ বাহিনীর কাজে দক্ষতার্জন একান্ত জরুরি।প্রশিক্ষণ সূচি তথা প্রক্রিয়ার এটি এক অপরিহার্য অঙ্গ। মানুষের মনস্তাত্ত্বিক আচরণএবং আচরণগত মনস্তত্ত্ব এই ধরণের প্রশিক্ষণের দুটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিক বলে মনেকরেন তিনি। সমষ্টিগতপ্রশিক্ষণ প্রচেষ্টার মাধ্যমে পুলিশ বাহিনীর গুণগত পরিবর্তনের আহ্বান জানানপ্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, পুলিশ বাহিনীকে এগিয়ে যেতে হলে প্রযুক্তি ও মানবশক্তিরসমন্বয়ের ওপর গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। এই উপলক্ষে‘ইন্ডিয়ান পুলিশ অ্যাট ইয়োর কল’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ-এরও সূচনা করেনপ্রধানমন্ত্রী। আজ হরিয়ানার সোনিপত-এ তিনটি মহাসড়ক প্রকল্পের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে প্রদত্ত এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র অর্থ দিয়ে সড়ক গড়ে তোলা যায় না বরং, সড়কই অর্থের যোগান দেয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের প্রাথমিক শর্তই হল সড়ক ও বিদ্যুতের মতো পরিকাঠামো প্রকল্পের বিকাশ। ঠিকমতো পরিকাঠামো গড়ে তুলতে পারলে উন্নয়নে গতি সঞ্চার ঘটে এবং জীবনযাত্রার মানও তাতে উন্নত হয়। এই মহাসড়কগুলি হরিয়ানার উন্নয়নকে ত্বরান্বিত করবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। থেমে যাওয়া প্রকল্পগুলির দ্রুত রূপায়ণের লক্ষ্যে প্রতি মাসে বিভিন্ন রাজ্য ও মন্ত্রকগুলির সঙ্গে ‘প্রগতি’ পর্যায়ে মতবিনিময় করা হয় বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। আগামী এক হাজার দিনের মধ্যে বিদ্যুৎহীন ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যের কথা পুনরায় ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সালের মধ্যে দেশের প্রতিটি প্রান্তে ২৪ ঘন্টাই বিদ্যুৎ সরবরাহ অক্ষুণ্ণ রাখা হবে। ভালো ঘটনা বারবার স্মরণ করলে জীবনে একটি নতুন উদ্দীপনা জেগেওঠে, রাষ্ট্রজীবনকেও নতুন শক্তি যোগায়। তেমনই আমাদের নবীন প্রজন্মের কাছে এ ধরনেরউদ্দীপনা পৌঁছে দেওয়ার কর্তব্য আমাদেরই। প্রজন্ম থেকে প্রজন্মান্তরে ইতিহাসের একটিসোনালী পৃষ্ঠাকে, তৎকালীন পরিবেশকে, আমাদের মহাপুরুষদের আত্মবলিদানকে, কর্তব্যকে,সামর্থ্যকে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কাছে পৌঁছে দেওয়ার দায়িত্ব প্রত্যেকেরই রয়েছে। আগস্ট বিপ্লবের ২৫তম বর্ষপূর্তি, ৫০তম বর্ষপূর্তিতে সকল দেশবাসী ঐঘটনাগুলিকে স্মরণ করেছে। আজ ৭৫তম বর্ষপূর্তি হচ্ছে, আমি একে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণবলে মনে করি। আর সেজন্য আমি অধ্যক্ষ মহোদয়ার কাছে কৃতজ্ঞ যে আমরা এভাবে উদযাপনেরসুযোগ পেয়েছি। দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে ৯ আগস্ট শুরু হওয়া এই আন্দোলন এত তীব্র এবংব্যাপক রূপ ধারণ করেছিল যে ইংরেজরা এর কল্পনাও করেনি। ইতিহাসের ঐ ঘটনাগুলি থেকে আমরা কিভাবে জনমানসে একটি নতুন প্রেরণা, নতুনসামর্থ্য, নতুন সংকল্প, নতুন কর্তব্যবোধ জাগিয়ে তুলতে পারি – সেই প্রচেষ্টাপ্রতিনিয়ত চালিয়ে যেতে হবে। ১৯৪৭ সালে দেশ স্বাধীন হয়েছে। ১৮৫৭ থেকে ১৯৪৭ ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনেরনানা পর্যায়ে আমরা অনেকের পরাক্রমের কথা জানি, অনেকে আত্মাহুতি দেন, অনেকউত্থান-পতনও আসে। কিন্তু সাতচল্লিশের স্বাধীনতার পেছনে বিয়াল্লিশের ঘটনাক্রমেরতীব্রতা ও ব্যাপকতার প্রভাব অপরিসীম। সেই ব্যাপক গণআন্দোলন, গণসংঘর্ষের পরস্বাধীনতার জন্য শুধু সময়ের অপেক্ষাই ছিল। ১৮৫৭-র স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ই প্রথমদেশের প্রতিটি প্রান্ত থেকে স্বাধীনতা সংগ্রামের সময়ই প্রথম দেশের প্রতিটি প্রান্তথেকে স্বাধীনতার বিউগল বেজে উঠেছিল। ১৯৪২ সালের আন্দোলনেঅংশগ্রহণকারীদের মনে ছিল, ‘এখন না হলে আর কোনও দিনই নয়’ ধরণের মনোভাব। সেজন্যদেশের প্রায় প্রত্যেক মানুষই এই আন্দোলনে সামিল হয়েছিলেন। একটা সময় মনে হ’ত,স্বাধীনতা আন্দোলন বুঝি অভিজাত সম্প্রদায়ের দ্বারা পরিচালিত। কিন্তু বিয়াল্লিশেরবিপ্লবে দেশের এমন কোনও প্রান্ত বাকি ছিল না, এমন কোনও বর্গ বাকি ছিল না, এমন কোনওসামাজিক অবস্থা অবশিষ্ট ছিল না, যারা একে নিজস্ব করে নেয়নি। আর তাঁরা গান্ধীজীরআহ্বানে সাড়া দিয়ে ঝাঁপিয়ে পড়েন। সেই আন্দোলন, যার অন্তিম স্বর ছিল ‘ভারত ছাড়ো’। আমিপূর্ণ স্বাধীনতা থেকে কম কিছু নিয়ে সন্তুষ্ট থাকব না। এইবক্তব্যের মাধ্যমে বাপুজী স্পষ্ট করে দেন যে তিনি অহিংসার পথ ত্যাগ করেন। কিন্তুতৎকালীন পরিস্থিতিতে জনসাধারণের প্রত্যাশার চাপ এতটাই ছিল যে বাপুজীকেও তাদেরপ্রত্যাশার অনুকূল শব্দ প্রয়োগ করতে হয়েছিল। সেই সময় গ্রামে গ্রামে কৃষক, মজুর, শিক্ষক ও ছাত্র সকলেই এই আন্দোলনেঝাঁপিয়ে পড়ে। বাপুজীও উদ্বুদ্ধ হয়ে বলেন, ইংরেজদের হিংসার শিকার হয়ে কোনও ভারতীয়শহীদ হলে তাঁর শরীরে একটি পোস্টার সেঁটে দিতে হবে, ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে – আর ইনিস্বাধীনতা আন্দোলনে শহীদ হয়েছেন’! নেতা থেকে নাগরিক কারও ভাবনায় কোনও অন্তর ছিল না, আর আমি মনে করি, দেশযখন উঠে দাঁড়ায়, সমূহের সম্মিলিত শক্তি মহীয়ান হয়ে অঠে, লক্ষ্য নির্ধারিত হয় আরসেই লক্ষ্য পূরণের জন্য মানুষ কৃতসংকল্প হয়ে বীরদর্পে এগিয়ে যায়। ১৯৪২ থেকে ১৯৪৭সালের মধ্যে এই সম্মিলিত শক্তি সকল শৃঙ্খল ভেঙে ফেলে, আর ভারতমাতা মুক্ত হয়। প্রত্যেক ব্যক্তি নেতা হয়ে ওঠেন আরদেশের প্রত্যেক গ্রাম ও শহরের প্রতিটি চৌ-মাথা ‘করব বা মরব’ আন্দোলনের দপ্তরেপরিণত হয়। গোটা দেশ বিপ্লবের যজ্ঞের আগুনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। বিপ্লবের লাভাস্রোত সারা দেশেধিকি ধিকি থেকে দাউ দাউ করে জ্বলে ওঠে। বোম্বাই পথ দেখায়। আসা-যাওয়ার সকল পথ রুদ্ধহয়ে যায়। কোর্টকাছারি খা খা করে। ভারতীয়দের বীরত্ব আর ব্রিটিশ সরকারের নৃশংসতারখবর সর্বব্যাপী হচ্ছিল। সাধারণ মানুষ গান্ধীজির ‘করব অথবা মরব’ মন্ত্রকে হৃদয়েস্থান দিয়েছিল”। চল পড়ে কোটি পগ উসী ওর ১৯৪২ সালের আন্তর্জাতিক পরিবেশওভারতের স্বাধীনতার অনুকূল ছিল। আমাদের সকলকে রাজনীতিরঊর্ধ্বে উঠে এই অনুকূল আবহের সুযোগ নিয়ে সাফল্যের পথে এগোতে হবে। আমাদের উপরে রয়েছেন ১২৫কোটি দেশবাসী, এই ভাবনা মাথায় নিয়ে আমরা সবাই মিলে এগিয়ে গেলে, মিলেমিশে কাজ করলে,এই সমস্যাগুলির সমাধানে সাফল্য পাবই। একথা সত্যি যে ১৮৫৭ থেকে ১৯৪২ – এর মধ্যে স্বাধীনতা আন্দোলন নানা পর্যায়েঅনেক উত্থান-পতন দেখেছে, অনেক মোড় ঘুরেছে, নতুন নতুন নেতৃত্ব এগিয়ে এসেছেন, কখনওবিদ্রোহ-বিপ্লবের পথ আবার কখনও অহিংসার পথ প্রাধান্য পেয়েছে। কখনও উভয় ধারা একেঅন্যের বিরুদ্ধে যুযুধান আবার কখনও পরস্পরের পরিপূরক। কিন্তু ১৮৫৭ থেকে ১৯৪২পর্যন্ত সময়কালকে একসঙ্গে দেখলে অনুভব করব যে সর্বদাই আমাদের দেশের আন্দোলনক্রমবর্ধমান গতিতে স্বাধীনতার স্পৃহাকে বাড়িয়ে গেছে। ধীরে ধীরে এগিয়েছে, ধীরে ধীরেবিস্তার লাভ করেছে, মানুষের যোগদানও ধীরগতিতে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের সমাজ জীবনেও তেমনই গত ১০০-২০০ বছরের ইতিহাস ধীরগতিতে এগিয়ে যাওয়ারইতিহাস। এই সময়কাল আমাদের দায়িত্ব পালনেরসময়কাল হয়ে উঠবে। আমরা যদি ভারত’কে সেই উচ্চতায় নিয়ে যেতে পারি, তা হলে বিশ্বেরঅনেক দেশকে আমরা সাহায্য করতে পারব, মানবতার উন্নয়নে নেতৃত্ব দিতে পারব,প্রযুক্তির ব্যবহারে নেতৃত্ব দিতে পারব। আর সেজন্য সম্মিলিত ইচ্ছাশক্তিকে জাগ্রতকরতে হবে, দেশকে সংকল্পবদ্ধ করে তুলতে হবে, দেশের মানুষের পাশে দাঁড়িয়ে, তাঁদেরকেসঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। আর সেজন্য এই পাঁচ বছরে আমরা কিছু বিষয়ে মতৈক্যেরভিত্তিতে উন্নয়নের কাজ করতে পারলে আমার বিশ্বাস আমরা অনেক গুরুত্বপূর্ণ কাজ করতেপারব। আমরা সম্প্রতি দেখেছি, জিএসটি’র ক্ষেত্রে; আমি বারবার বলছি যে, এটা আমার কোনও রাজনৈতিক বিবৃতি নয়।এটা আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, জিএসটি কোনও নির্দিষ্ট সরকারের সাফল্য নয়। কোনও রাজনৈতিকদলের সাফল্য নয়। রাজনীতি নির্বিশেষে এই সংসদ ভবনে উপস্থিত সকল সাংসদের ইচ্ছাশক্তিরপরিণাম এই জিএসটি। জিএসটি বিশ্ববাসীর কাছে একটি আশ্চর্য করব্যবস্থা, এদেশের জনসংখ্যা, আকার ও আয়তনের বিশালতা এবং বৈচিত্র্য থাকা সত্ত্বেওআমরা যখন এরকম গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে পেরেছি, ১২৫ কোটি মানুষের জনপ্রতিনিধিরূপে আমরা একসঙ্গে বসে দেশের স্বার্থে এমনই অনেক সিদ্ধান্তই নিতে পারব। ১২৫ কোটিদেশবাসীকে সঙ্গে নিয়ে ২০২২ সালের মধ্যে নতুন ভারতের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার শপথনিলে, আমার বিশ্বাস, আমরা পরিণাম অর্জন করতে পারবই। মহাত্মা গান্ধীর আহ্বান ছিল – ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’। আমরা সবাই মিলে দেশের নবীন প্রজন্মের স্বরোজগারের সুযোগ করে দেব এবং করেইছাড়ব। আমরা সবাই মিলে দেশ থেকে অপুষ্টির সমস্যা দূর করব এবং করেই থামব। আমরা সবাইমিলে মহিলাদের এগিয়ে যাওয়ার পথে সকল শৃঙ্খলমুক্ত করব এবং করেই ছাড়ব। আমরা সবাইমিলে দেশ থেকে অশিক্ষা দূর করে তবেই থামব। আরও অনেক বিষয় রয়েছে; তাই সেই সময়েরমন্ত্র যেমন ছিল ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ আর আজ থেকে ২০২২ সালের মধ্যে আমাদেরমূলমন্ত্র হওয়া উচিৎ ‘করেঙ্গে অউর করকে রহেঙ্গে’। এই সংকল্প নিয়ে আমরা এগিয়ে যাব।এই সংকল্প কোনও দলের নয়, কোনও সরকারের নয়; এই সংকল্পকে ১২৫ কোটি দেশবাসীর সংকল্পেপরিণত করতে, ১২৫ কোটি জনগণের প্রতিনিধি হিসাবে আমাদের মিলিত সংকল্পের ভূমিকাঅপরিমেয়। আমার বিশ্বাস সংকল্প থেকে সিদ্ধির পাঁচ বছরে পরিণত হবে এই ২০১৭ থেকে ২০২২– পাঁচ বছর। আসুন, আজ আগস্ট বিপ্লবের সেই মহাপুরুষদের স্মরণ করে, তাঁদের ত্যাগ,তপস্যা, আত্মবলিদান’কে স্মরণ করে, তাঁদের পুণ্য স্মৃতি থেকে আশীর্বাদ গ্রহণ করেআমরা সবাই মিলে, কিছু বিষয়ে সহমত হয়ে দেশকে নেতৃত্ব দিই, দেশকে সমস্যামুক্ত করি।স্বপ্ন, সামর্থ্য, শক্তি আর লক্ষ্য পূরণের জন্য এগিয়ে যাই! প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, আজ সক্রিয় প্রশাসন ও সময়োচিত রূপায়ণের জন্য তথ্যপ্রযুক্তি ভিত্তিক মাল্টিনোডাল মঞ্চ, ‘প্রগতি’র মাধ্যমে ২৭তম আলাপচারিতায় পৌরহিত্য করেন। এর আগের ২৬টি প্রগতি বৈঠকে ১১ লক্ষ কোটি টাকার মোট বিনিয়োগের বিভিন্ন প্রকল্প নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রের জন অভিযোগ নিষ্পত্তির বিষয়েও পর্যালোচনা হয়। আজকের ২৭তম বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী রেল, সড়ক ও শক্তি ক্ষেত্রে আট-টি পরিকাঠামো প্রকল্পের কাজের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। এই প্রকল্পগুলি বিহার, ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, হিমাচলপ্রদেশ, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখন্ড, মহারাষ্ট্র, ওড়িষা, চন্ডীগড়, অন্ধ্রপ্রদেশ, দিল্লী, গুজরাট, রাজস্হান, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও অরুনাচলপ্রদেশে রূপায়িত হচ্ছে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী বর্তমানে চালু জেলা/রেফারেল হাসপাতালগুলির সঙ্গে যুক্ত নতুন মেডিকেল কলেজ স্হাপনের কাজও পর্যালোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৮’র ১৪ এপ্রিল থেকে ৫ মে পর্যন্ত চলা গ্রাম স্বরাজ অভিযানে দেশের ১৬০০০ হাজারের বেশি গ্রামে কেন্দ্রীয় সরকারের সাতটি প্রধান কর্মসূচি রূপায়ণে বিপুল সাফল্য অর্জিত হয়েছে। তিনি বলেন, দেশের উন্নয়নকামী জেলাগুলির ৪০০০০-এর বেশি গ্রামে, গ্রাম স্বরাজ অভিযানের দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ চলছে। তিনি এই কাজের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কেন্দ্রীয় ও রাজ্য সরকারের আধিকারিকদের ১৫ অগাস্টের মধ্যে সম্ভাব্য সর্বশ্রেষ্ঠ ফলাফল অর্জনের লক্ষে কাজ করার আহ্বান জানান। নয়া দিল্লি: ৩ জানুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিরপৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার ভারতের জন-পরিবহন ব্যবস্থার উন্নয়নের জন্য কেন্দ্রীয়সড়ক পরিবরহন ও মহাসড়ক মন্ত্রক এবং গ্রেটার লন্ডন অথরিটি অ্যাক্ট, ১৯৯৯ (ইউ.কে.)-এরঅধীনে গঠিত বিধিবদ্ধ সংস্থা ‘ট্রান্সপোর্ট ফর লন্ডন’-এর মধ্যে সমঝোতা স্মারক (মউ)স্বাক্ষর ও রূপায়ণের অনুমোদন দিল| প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কেন্দ্রীয় সচিবদের সাক্ষাৎকারকালে উপস্থিত ছিলেন দুই কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং ও শ্রী মনোহর পাররিকর এবং নিতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান শ্রী অরবিন্দ পানাগারিয়া। প্রস্তাব পেশের পর তাঁদের অনেকেই সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির ওপর তাঁদের সুচিন্তিত মতামত ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি আজ গান্ধী জয়ন্তী উপলক্ষ্যে রাজঘাটে গিয়ে জাতির জনক মহাত্মা গান্ধীর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেন| প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটে দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে শোকপ্রকাশ করেছেন । প্রধানমন্ত্রীবলেছেন “ গুজরাটের রাংঘোলা-র কাছে দুর্ঘটনায়যাঁরা তাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, তাঁদের প্রতি জানাই সমবেদনা । এই দুর্ঘটনায় ছিল অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক এবং ক্ষোভ উদ্রেককারি । প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অসামরিক বিমান পরিবহণ নীতিটিকে আজ অনুমোদন দেওয়া হল। • দ্বিপাক্ষিক বিমান চলাচল সংক্রান্ত অধিকার • কোড-শেয়ার সম্পর্কিত চুক্তি • রাজ্য সরকার, বেসরকারি ক্ষেত্র এবং সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে গড়ে তোলা বিমানবন্দর • ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ • বিমান চলাচল সম্পর্কিত পরিষেবা • বিমান চলাচল সম্পর্কিত নিরাপত্তা, বিদেশি যাত্রী আগমন এবং কাস্টম্‌স সংক্রান্ত নিয়ম-নীতি • রক্ষণাবেক্ষণ, সংস্কার ও মেরামত • বিমান পরিষেবায় ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির অন্তর্ভুক্তি • বিমান চলাচল সম্পর্কিত শিক্ষা ও দক্ষতা অর্জন অনুপ্রেরণাদায়ক এই শব্দগুলির পাশাপাশি, শ্রদ্ধেয় স্বামী বিবেকানন্দের সমৃদ্ধ ভাবাদর্শ, তাঁর জয়ন্তীতে স্মরণ করছি। তিনি সেবা ও আত্মত্যাগের আদর্শ গ্রহণে জোর দিয়েছিলেন। যুবশক্তিতে তাঁর বিশ্বাস ছিল অটল ও দ্বিধাহীন। স্বামীও বিবেকান্দের আদর্শ ও চিন্তাভাবনা কোটি কোটি ভারতবাসী, বিশেষ করে, যুবসম্প্রদায়কে অনুপ্রাণিত ও উৎসাহিত করে। মউটি স্বাক্ষরিত হলে সুপ্রাচীন চিকিৎসা ব্যবস্থা, অর্থাৎ, আয়ুষপদ্ধতির প্রসার ও উন্নয়নে দুটি দেশ পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা বৃদ্ধির কাজে উৎসাহিতহবে। এই কর্মসূচির অধীনে আমাদের দেশের হাজার হাজার স্কুলে অত্যাধুনিক অটল টিঙ্কারিং ল্যাব, বিশ্ব মানের অটল ইনকিউবেশন সেন্টার এবং অটল কম্যুনিটি ইনোভেশন সেন্টার গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি আজ প্রগতি মঞ্চের মাধ্যমে সংশ্লিষ্টদের সাথে মত-বিনিময় করেন| উল্লেখ্য, সরকারী ব্যবস্থাপনাকে সক্রিয় করে তোলা ও সময়োচিত কার্য সম্পাদনের লক্ষ্যে তথ্য-প্রযুক্তি ভিত্তিক বহু ধারার একটি মঞ্চ হলো প্রগতি (প্রো-একটিভ গভর্নেন্স এন্ড টাইমলি ইমপ্লিমেন্টেশন)| এদিনের বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সড়ক, রেল, মেট্রো রেল, বিদ্যুৎ সম্পর্কিত কয়েকটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো প্রজেক্ট এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্রের কিছু প্রজেক্টের রূপায়নের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করেন| এই প্রজেক্টগুলি বেশ কয়েকটি রাজ্যে, যেমন, দিল্লি, হরিয়ানা, উত্তর প্রদেশ, বিহার, ঝাড়খন্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র ও তেলেঙ্গানায় রূপায়নের কাজ চলেছে| হায়দরাবাদ মেট্রো রেল প্রজেক্টের পর্যালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী পিপিপি মডেলের এই প্রকল্পের কাজে সর্বশ্রেষ্ঠ গুণগত মান বজায় রেখে দ্রুত সম্পাদন করতে সংস্লিষ্ট সকল কর্তৃপক্ষের প্রতি আর্জি জানান| প্রধানমন্ত্রী আজ অন্যান্য যেসকল গুরুত্বপূর্ণ প্রজেক্টের পর্যালোচনা করেন এর মধ্যে রয়েছে পূর্বাঞ্চলগামী সুনির্দিষ্ট পণ্য পরিবহন সরণী বা ইস্টার্ন ডেডিকেটেড ফ্রাইট করিডোর এবং দিল্লি-হরিয়ানা-উত্তরপ্রদেশ পূর্ব-প্রান্তিক মহাসড়ক| প্রধানমন্ত্রী এদিন ফুড পার্ক স্কিমের পর্যালোচনা করেন| এখন পর্যন্ত যে সমস্ত ফুড পার্কের কাজ সম্পন্ন হয়েছে সেগুলো থেকে কী সুফল বা লাভ হচ্ছে তার সার্বিক মূলায়ন করার জন্যও প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানান| “রাজ্যপ্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে মিজোরামবাসীকে জানাই আমার অভিনন্দন। আগামী দিনগুলিতেমিজোরাম উত্তরোত্তর সমৃদ্ধির দিকে এগিয়ে যাক এই প্রার্থনা জানাই। অরুণাচলপ্রদেশের রাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবসে সেখানে বসবাসকারী নাগরিকদের অভিনন্দন জানাই। দু’দেশের মধ্যে এই চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর। এই চুক্তি অনুযায়ী সহযোগিতা সংক্রান্ত কর্মকৌশল ও কর্মসূচি রূপায়ণের জন্য যৌথ কর্মীগোষ্ঠী গঠন করা হবে। বছরে একবার পর্যায়ক্রমে ভারতে ও ফ্রান্সে কমিটির বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। এই বিদ্যালয়টি ১৯৮৫ সালে চালু হওয়ার পর থেকেই অস্হায়ীভাবে অন্য ভবনে চলছিল। বর্তমানে এই বিদ্যালয়য়ের পড়ুয়া সংখ্যা ৮৫১। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে সৃষ্ট সুনামিতে জীবনহানির ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ইন্দোনেশিয়ায় আগ্নেয়গিরির অগ্নুৎপাতের ফলে যে সুনামির সৃষ্টি হয়েছে, তাতে জীবনহানির ঘটনায় আমি মর্মাহত। শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনকে আমার সমবেদনা জানাই এবং আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। অঙ্গীকারটি ছিলদক্ষিণ এশিয়ায় আমাদের ভাইবোনদের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির স্বার্থে মহাকাশ প্রযুক্তিকেআরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার। দক্ষিণ এশীয়উপগ্রহটির সফল উৎক্ষেপনের মাধ্যমে সেই অঙ্গীকার আজ পূরণ করা হল। এই উৎক্ষেপনেরমধ্য দিয়ে অংশীদারিত্বের সম্পর্কের সর্বোচ্চ লক্ষ্যের দিকে আজ আমাদের যাত্রা শুরুহল। সুদূর মহাকাশে উৎক্ষেপিতদক্ষিণ এশিয়া সহযোগিতার এই বিশেষ প্রতীকচিহ্নটি এই অঞ্চলের কোটি কোটি মানুষেরঅর্থনৈতিক অগ্রগতির স্বপ্নপূরণে সাহায্য করবে। আর এইভাবেই বর্হিমহাকাশের সঙ্গেনিবিড়তর হয়ে উঠবে আমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক। এই ধরণের একটি কর্মসূচি দক্ষিণ এশিয়ায় এই প্রথম। মহাকাশ প্রযুক্তিস্পর্শ করবে আমাদের এই অঞ্চলের সাধারণের মানুষের জীবনযাত্রাকে। নিজস্ব প্রয়োজন ওচাহিদা এবং অগ্রাধিকার ও সাধারণ পরিষেবা সম্পর্কিত সুনির্দিষ্ট পরিষেবা পৌঁছে যাবেসংশ্লিষ্ট প্রত্যেকটি দেশের কাছে এই উপগ্রহ ব্যবস্হার মাধ্যমে। এই লক্ষ্য পূরণেভারতের মহাকাশ বিজ্ঞানী বিশেষত ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্হাকে (ইসরো)আমি অভিনন্দনজানাই। এই অঞ্চলের প্রয়োজনও চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখে দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহটির নির্মাণ এবং ত্রুটিহীনভাবে তা উৎক্ষেপণেরকাজে নেতৃত্ব দিয়েছেন ইসরো-র বিজ্ঞানীরা। সরকার হিসেবে আমাদেরসর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ দায়িত্বটি হল দেশের জনসাধারণ তথা সমষ্টির জন্য শান্তি, উন্নয়নও অগ্রগতিকে সুনিশ্চিত করে তোলা। জ্ঞান, প্রযুক্তি ওঅগ্রগতিকে আমরা যখন মিলিতভাবে পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নিতে পারবো তখন আমাদেরউন্নয়ন তথা সমৃদ্ধি যে আরও গতিময় হয়ে উঠবে সে সম্পর্কে আমার স্হির বিশ্বাস রয়েছে। আপনাদের এইউপস্হিতির জন্য ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সেচ ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের দিশারিপ্রকল্প প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনা(পিএমএসওয়াই)-এর অগ্রগতি খতিয়ে দেখলেন বৃহস্পতিবার। প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর এবং নিতি আয়োগ ছাড়াও বিভিন্ন মন্ত্রকের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরাএই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। আধিকারিকরা জানিয়েছেন যে, অগ্রাধিকারমূলক ৯৯টি সেচ প্রকল্পের মধ্যে ৫.২২লক্ষ হেক্টর পরিমিত জমিতে সেচ সুবিধার সম্প্রসারণ সহ ২১টি প্রকল্পের কাজ ২০১৭’রজুনের মধ্যে শেষ হয়ে যাবে। এছাড়া, মহারাষ্ট্র, মধ্যপ্রদেশ ও ওড়িশায় আরও ৪৫টি অগ্রাধিকারমূলক প্রকল্পেরকাজ জোর কদমে এগিয়ে চলছে আর এই কাজ নির্ধারিত সময়ের আগেই শেষ হয়ে যাবে বলে আশা করাহচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বিন্দু ও অনুসেচ প্রকল্পগুলিতে সর্বাধিক দৃষ্টি দেওয়ার জন্যআধিকারিকদের অনুরোধ জানান। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর, কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্র এবং কৃষিবিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যে সমন্বয়সাধনের মাধ্যমে দক্ষ কৃষি প্রকল্প এবং সর্বোত্তমজল ব্যবহার পদ্ধতি উদ্ভাবনের জন্য তিনি বিভিন্ন আধিকারিককে আহ্বান জানান। আজ থেকে দু’দিনের জন্য শ্রীলঙ্কা সফর করছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। তাঁর এই সফর সম্পর্কে ফেসবুক অ্যাকাউন্টে প্রধানমন্ত্রী লিখেছেন : “আজ অর্থাৎ ১১ মে থেকে আমি দু’দিনের জন্য শ্রীলঙ্কা সফরে যাচ্ছি। দু’দেশেরবলিষ্ঠ সম্পর্কের একটি প্রতীক হিসাবে গত দু’বছরের মধ্যে এটি হ’ল আমার দ্বিতীয় দ্বিপাক্ষিকসফরসূচি। প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা, প্রধানমন্ত্রী বিক্রম সিংহে এবং অন্যান্য বিশিষ্টব্যক্তিদের সঙ্গেও আলোচনা বৈঠকে মিলিত হব আমি। শ্রীলঙ্কা থেকে সোশ্যাল মিডিয়ায় আমি এ সম্পর্কে আরও অনেক কিছুই জানাবআপনাদের। “উত্তরপ্রদেশেরএটাহ্‌ জেলায় মর্মান্তিক দুর্ঘটনার খবরে আমি উদ্বিগ্ন। চিন ওসিঙ্গাপুরের সঙ্গে ভারতের চুক্তিটির পুনর্নবীকরণের কথা বিবেচনা করা হচ্ছে বিদেশমন্ত্রকের সঙ্গে পরামর্শক্রমে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিমান বাহিনী দিবসে বায়ুসেনা কর্মীদের অভিবাদন জানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “আমি বিমান বাহিনী দিবসে বায়ুসেনা কর্মীদের অভিবাদন করি। তাঁরা বীরত্ব ও স্থির সংকল্প নিয়ে সদাসর্বদা দেশের সেবা করে থাকেন। আমাদের বিমান বাহিনীর অবদান বিরাট। প্রধানমন্ত্রী তাঁর অভিনন্দন বার্তায় বলেছেন, “ বিশ্ব বেতার দিবসে বেতার শিল্পের সঙ্গে যুক্ত সকল পক্ষ এবং সেইসঙ্গে শ্রোতাসাধারণকে জানাই আমার অভিনন্দন। এই প্রচারমাধ্যমটি শিক্ষা, আবিষ্কার, বিনোদন এবংএকসঙ্গে এগিয়ে চলার ক্ষেত্রে একটি অন্যতম মূল মাধ্যম হয়ে উঠুক এই কামনা জানাই। বেতার আমাদের পরস্পরকে আরওকাছে নিয়ে আসে। ২০১৮-র জি-২০ শিখর সম্মেলন আয়োজন করার জন্য এবং আমাদেরকে আতিথেয়তা প্রদান করার জন্য আর্জেন্টিনার রাষ্ট্রপতিকে আমরা অভিনন্দন জানাই। 2. আমরা আন্তর্জাতিক রাজনীতি, নিরাপত্তা এবং অর্থনৈতিক নিরাপত্তা ইস্যুতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার পন্থাপদ্ধতি নিয়ে মতবিনিময় করি। বিশ্ব শান্তি ও সুস্থিতির লক্ষ্যে রাষ্ট্রসঙ্ঘের দিশা-নির্দেশ অনুযায়ী কাজ করার জন্য আমরা পুনরায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হই। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি, সুস্থিতি বজায় রাখার জন্য আমরা পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধিতে সহমত হয়েছি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের স্থির করা দিশা-নির্দেশ অনুযায়ী ও আইনি পন্থাপদ্ধতি অনুযায়ী, আন্তর্জাতিক স্তরে সন্ত্রাস সমস্যা মোকাবিলায় যৌথ প্রয়াস চালানোর অঙ্গীকার নিয়েছি আমরা। সন্ত্রাস মোকাবিলার ক্ষেত্রে আমরা সব দেশগুলিকে একটি সুসংহত পরিকল্পনা গ্রহণ করার আবেদন জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আফ্রিকায় উন্নয়নমূলক সহযোগিতা লক্ষ্যে ভারত ও সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর মধ্যে মউ বা সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের প্রস্তাবে মন্ত্রিসভার অনুমোদন মিলেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি আজ বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী ডিভিড ক্যামেরুনকে বই রাখার জন্য কাঠ, মার্বেল এবং রূপা দিয়ে তৈরি একজোড়া বুক-এন্ডস্‌ উপহার দিয়েছেন। প্রতিটি ঘন্টায় একটি করে শ্লোক খোদাই করা হয়েছে। তিনি অবিভক্ত, যদিও তাঁকে সমস্ত ভূতে বিভক্ত বলে মনে হয়। তিনি সর্বভূতের পালক, সৃষ্টিকর্তা এবং সংহার কর্তা। মার্কিন বিদেশ সচিব মিঃ রেক্স ডব্ল্যু টিলারসন বুধবার এখানে সাক্ষাৎ করেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। বিদেশ সচিব পদে মিঃ টিলারসন-এর এটাই ছিলপ্রথম ভারত সফর। এ বছর জুন মাসে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প-এর সঙ্গে তাঁর ইতিবাচক এবংসুদূরপ্রসারী আলোচনার পরবর্তী পর্যায়ে দু’দেশের পারস্পরিক সম্পর্ক এবং কৌশলগতঅংশীদারিত্ব যে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত হতে চলেছে, একথা বিশেষ প্রশংসার সুরেব্যক্ত করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়, গতি এবং পরিধি আরও বাড়িয়ে তুলতে মার্কিন বিদেশসচিব টিলারসন এবং প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী সংকল্পবদ্ধ হন। তাঁরা বিশেষ জোর দিয়েবলেন যে, ভারত-মার্কিন সম্পর্ক শক্তিশালী হয়ে উঠলে তা শুধুমাত্র দুটি দেশেরউপকারেই আসবে না, একই সঙ্গে তা আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধিপ্রচেষ্টার ওপরও ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এর পরিপ্রেক্ষিতে মার্কিন বিদেশ সচিব এই অঞ্চলে তাঁর সাম্প্রতিক সফরসম্পর্কে মতামত বিনিময় করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি জাতীয় ভোটার দিবস উপলক্ষে সোমবার দেশের সমস্ত নাগরিক ও ভোটারদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জাতীয় ভোটার দিবসে সমস্ত নাগরিক ও ভোটারদের শুভেচ্ছা জানাই। আমাদের গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করতে ব্যাপক প্রয়াস গ্রহন করার জন্য নির্বাচন কমিশনকে অভিনন্দন জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের নবীন উদ্ভাবক ও স্টার্টআপ শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে বুধবার (৬ জুন) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলাপচারিতায় মতবিনিময় করেছেন। বিভিন্ন সরকারী প্রকল্পের উপভোক্তাদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে আলাপ-আলোচনার এটি চতুর্থ পর্ব। স্টার্ট-আপের ক্ষেত্রে সাফল্য পেতে যথেষ্ট পরিমানে মূলধন, সাহস ও মানুষের সঙ্গে সংযোগস্হাপনের ক্ষমতা থাকার প্রয়োজন রয়েছে বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন স্টার্টআপ কেবল ডিজিটাল ও প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ নয়। স্টার্ট আপের উদ্যোগীরা বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছেন বলেও শ্রী মোদী জানান। ২৮টি রাজ্য, ৩টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল ও ৪১৯ জেলায় স্টার্ট-আপের নথি জমা পড়েছে। সরকারের প্রচেষ্টায় কিভাবে ব্যবসার স্বত্ত্ব ও ট্রেডমার্কের নথিভুক্তির পদ্ধতি সহজ হয়েছে, তা প্রধানমন্ত্রী ব্যাখ্যা করেন। ট্রেডমার্ক দাখিলের জন্য প্রয়োজনীয় ফর্মের সংখ্যাও ৭৪ থেকে কমিয়ে তিন করেছে সরকার, যার ফলে ট্রেডমার্ক নথিভুক্তির সংখ্যা তিনগুণ বেড়েছে। পূর্ববর্তী সরকারের সময়ের তুলনায় বর্তমানে স্বত্ব নথিভুক্তও তিনগুণ বেড়েছে। স্টার্ট-আপ সংস্হাগুলিকে প্রথম তিন বছরের জন্য কর-ছাড়ের সুবিধা দেওয়া হয়েছে। নবীন শিল্পপতিদের স্বশংসায়নের সুবিধা দিতে দুটি শ্রমিক আইন ও তিনটি পরিবেশ আইনের ধারা সংশোধন করা হয়েছে। এছাড়া, স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া হাব নামক একটি ওয়েবসাইট চালু হয়েছে যাতে উদ্যোগপতিরা স্টার্ট-আপ সংক্রান্ত সবরকম তথ্য পাবেন। অংশগ্রহণকারীদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় শ্রী মোদী জানান, অটল নতুন ভারত চ্যালেঞ্জ, স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথন ও অ্যাগ্রিকালচার গ্র্যান্ড চ্যালেঞ্জ সহ নানা প্রতিযোগিতা সরকার চালু করেছে যাতে নবীন প্রজন্মকে উদ্ভাবন ও প্রতিযোগিতার প্রতি উৎসাহিত করে তোলা যায়। সিঙ্গাপুর ও ভারতের উদ্ভাবকদের মধ্যে স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনের মত প্রতিযোগিতা আয়োজনের বিষয়ে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তাঁর আলোচনার কথাও প্রধানমন্ত্রী জানান। প্রধানমন্ত্রী আরও উল্লেখ করেন যে সরকার দেশে উদ্ভাবনী কাজকর্মে উৎসাহপ্রদানে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। কম বয়সীদের গবেষণা ও উদ্ভাবনী কাজে উৎসাহ যোগাতে দেশজুড়ে ৪টি গবেষণা উদ্যান ও ২৫০০ অটল টিঙকারিং ল্যাব-ও চালু করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নবীন উদ্ভাবকদের দেশের কৃষি ক্ষেত্রকে রূপান্তরের বিষয়ে ভাবনাচিন্তা করতে বিশেষভাবে আহ্বান জানান। তিনি বলেন, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’র পাশাপাশি‘ডিজাইন ইন ইন্ডিয়া’ও খুবই জরুরি। ‘উদ্ভাবন কর বা নিশ্চল হয়ে যাও’ মন্ত্র উচ্চারণ করে প্রধানমন্ত্রী নবীন প্রজন্মকে উদ্ভাবনের কাজ চালিয়ে যেতে উৎসাহ যোগালেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতার সময় নবীন উদ্ভাবকরা ব্যাখ্যা করে জানান, স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া উদ্যোগের আওতায় বিভিন্ন সরকারী প্রকল্প থেকে তাঁরা কিভাবে উপকৃত হয়েছেন। উদ্যোগপতি ও উদ্ভাবকরা কৃষিক্ষেত্র থেকে ব্লকচেন প্রযুক্তি সংক্রান্ত নানা উদ্ভাবনের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে জানান। বহু অটল টিংকারিং ল্যাবে কাজ করা স্কুলের ছাত্রছাত্রীরা নিজেদের উদ্ভাবনের কথা প্রধানমন্ত্রীকে জানায়। শ্রী মোদী স্কুল পড়ুয়াদের বৈজ্ঞানিক দক্ষতার প্রশংসা করেন ও এরকম আরো নতুন নতুন উদ্ভাবন প্রস্তুত করতে তাদের উৎসাহ যোগান। ‘উদ্ভাবন কর ভারত’কে জন আন্দোলনে রূপান্তরের আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (২৪ ফেব্রুয়ারি) উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুর সফর করবেন। তিনি সেখান থেকে ‘পিএম-কিষাণ’ প্রকল্পের সূচনা করবেন। গোরক্ষপুরে ফার্টিলাইজার কর্পোরেশনের মাঠে প্রধানমন্ত্রী ‘পিএম-কিষাণ’ প্রকল্পের সূচনা করবেন এবং নির্দিষ্ট কয়েকজন কৃষককে প্রথম কিস্তির অর্থ হিসেবে বৈদ্যুতিন উপায়ে ২,০০০ টাকা হস্তান্তর করবেন। এই অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে ‘পিএম-কিষাণ’ প্রকল্পের সুচনা ঘটবে। প্রকল্পের আওতায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী কয়েকজন কৃষকের হাতে শংসাপত্র তুলে দেবেন। এছাড়াও, ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে প্রকল্পের সুবিধাভোগী কয়েকজন কৃষকের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। ২০১৯-২০-র অন্তর্বর্তী বাজেটে গত ১ ফেব্রুয়ারি ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি যোজনা’ (পিএম-কিষাণ)-র কথা ঘোষণা করা হয়। প্রকল্পের আওতায় ২ হেক্টর পর্যন্ত জমির মালিকানা রয়েছে এমন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের বার্ষিক ৬,০০০ টাকা দেওয়া হবে। মোট তিন কিস্তিতে ২,০০০ টাকা করে এই অর্থ কৃষকদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি জমা করে দেওয়া হবে। সরাসরি সুবিধা হস্তান্তর ব্যবস্থার মাধ্যমে প্রতি কিস্তির টাকা অ্যাকাউন্টে জমা পড়বে। এমনকি, এই ব্যবস্থার ফলে সমগ্র প্রক্রিয়ায় যেমন স্বচ্ছতা আসবে, তেমনই কৃষকদের সময়ও সাশ্রয় হবে। ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের আয় বাড়াতেই এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। মনে করা হচ্ছে, প্রকল্পের ফলে ১২ কোটিরও বেশি ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষক লাভবান হবেন। আধুনিক কৃষি পদ্ধতি এবং সাজসরঞ্জাম সংগ্রহের ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষিদের আর্থিক চাহিদা মেটানোর এক পরিপূরক ব্যবস্থা হিসেবে ‘পিএম-কিষাণ’ প্রকল্পের সূচনা। ভারত সরকারের ১০০ শতাংশ তহবিলপুষ্ট কেন্দ্রীয় স্তরের প্রকল্প হল ‘পিএম-কিষাণ’। বৈধ সুবিধাভোগীদের কাছে সুযোগ-সুবিধা হস্তান্তরের লক্ষ্যে গত ১ ডিসেম্বর থেকে এই প্রকল্প কার্যকর হচ্ছে। প্রকল্পের নীতি-নির্দেশিকা অনুযায়ী, বৈধ কৃষক পরিবারগুলিকে চিহ্নিতকরণের দায়িত্ব রাজ্য সরকার ও কেন্দ্রশাসিত প্রশাসনগুলির। প্রতি বছর তিন কিস্তির মাধ্যমে সুনিশ্চিত অর্থ সহায়তা প্রদানের লক্ষ্যে ভারতে ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে ‘পিএম-কিষাণ’ প্রকল্প এক বিপ্লবের সূচনা করতে চলেছে। এককালীন ঋণ মকুব হিসেবে ‘পিএম-কিষাণ’ প্রকল্প ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক কৃষকদের মর্যাদাপূর্ণ জীবনযাপনের উপযোগী হয়ে উঠবে। দীর্ঘমেয়াদি ভিত্তিতে এই প্রকল্প কৃষকদের কাজের খোঁজে অন্যত্র যাওয়া রোধ করবে, এমনকি, কৃষি উৎপাদনশীলতা বাড়বে। প্রধানমন্ত্রী গোরক্ষপুরে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস বা জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এই উপলক্ষে এক জনসভাতেও তিনি ভাষণ দেবেন। গোরক্ষপুরে প্রধানমন্ত্রী যে সমস্ত প্রকল্পের সূচনা করবেন তার মধ্যে গ্যাস পরিকাঠামো থেকে স্বাস্থ্য পরিষেবা সংক্রান্ত বিভিন্ন কর্মসূচি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দিল্লির প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী মদন লাল খুরানার মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মদন লাল খুরানাজির মৃত্যুতে তিনি ব্যথিত। দিল্লির উন্নয়নে, বিশেষ করে পরিকাঠামোর মানোন্নয়নে মদন লাল খুরানা নিরলসভাবে কাজ করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁকে দিল্লি ও কেন্দ্রীয় সরকারের একজন কঠোর পরিশ্রমী ও জনদরদী প্রশাসক হিসাবে অভিহিত করেন। মদন লালা খুরানা দিল্লিতে বিজেপি-র সাংগঠিক ভিত্তি মজবুত করতে তাঁর নানান কাজকর্মের মধ্য দিয়ে চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবেন। দেশ ভাগের পরে দিল্লিতে শরণার্থীদের সেবায় তিনি নিয়োজিত করেছিলেন। ২০০৩ সালের ৮ অক্টোবর থেকে এই সংশোধনটি কার্যকর হবে। বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের গুরুদ্বার আইন সংশোধনের প্রস্তাব সম্পর্কে বিশদভাবে আলোচনা করা হয়। মেঘালয়ের প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীর এই দিনে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানাই। দেশের উন্নয়নে, মেঘালয়বাসীর অবদান বিশেষ উল্লেখযোগ্য। সশস্ত্রবাহিনীর ‘পতাকা দিবস’-এ বাহিনীর সেনাকর্মী এবং প্রবীণ সেনানীদের সম্মান জানালেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভগবান বিরসা মুন্ডার জন্মবার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন। সংযোগ এবং সৌর উজলাযোজনা-র সূচনা উপলক্ষে সোলার পাম্প বিতরণ করেন| প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন যে, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীশ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীই শান্তিপূর্ণ ও সম্প্রীতিপূর্ণ পদ্ধতিতে ছত্তিসগড় সহতিনটি নতুন রাজ্যের গঠন সুনিশ্চিত করেছিলেন| দশ দিনে ভীমঅ্যাপ এক কোটি বারেরও বেশি ডাউনলোড হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী হর্ষপ্রকাশ করেছেন। ভীম অ্যাপলেনদেন’কে আরও দ্রুত ও সহজ করে তুলেছে আর তার ফলে যুবসমাজের মধ্যে এটি জনপ্রিয় হয়েউঠেছে। এই অ্যাপটি ব্যবসায়ীদের পক্ষেও সুবিধাজনক। নয়া দিল্লি: ৩০ সেপ্টেম্বর: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিবিজয়া দশমীর শুভ অনুষ্ঠান উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন| চুক্তিটি গত ২৪শে আগস্ট স্বাক্ষরিত হয়। সংশোধিত চুক্তি স্বাক্ষরিত হলে দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও বাণিজ্য বৃদ্ধি পাবে। নয়াদিল্লি, ১৮ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বেঙ্গালুরুস্থিত ন্যাশনাল সেন্টার ফর বায়োলজিক্যাল সায়েন্সের অধীনে ইন্সটিটিউট ফর স্টেম সেল রিসার্চ পরিদর্শন করেন। প্রতিষ্ঠানের গবেষণাগারে গিয়ে তিনি বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে দেখা করেন এবং সেখানে যে গবেষণাগুলি চলছে, সে বিষয়ে ওয়াকিবহাল হন। শ্রী মোদী প্রায় আধ ঘন্টা ধরে নবীন বৈজ্ঞানিকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় ছিলেন। ভারতের পরম্পরাগত ভেষজ, জিন থেরাপির মাধ্যমে সিকেল সেল অ্যানিমিয়ার নিরাময় কাজে অগ্রগতি, জিন ব্যাঙ্ক তৈরির মাধযমে বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ ও `মেক ইন ইন্ডিয়া` কর্মসূচি সহ বিভিন্ন বিষয়ে তিনি আলোচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী বৈজ্ঞানিকদের স্কুল- পড়ুয়াদের সঙ্গে মেলামেশা তাদের এই ক্ষেত্রে কাজ করার অনুপ্রেরণা যোগানোর উপদেশ দেন। মঙ্গলবারবার্লিনে চতুর্থ ভারত-জার্মানি আন্তঃসরকারি পরামর্শ বৈঠকে নেতৃত্ব দিলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জার্মানির চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল। বৈঠকেরশেষে সংবাদমাধ্যমের সামনে তাঁর বক্তব্য উপস্থাপনাকালে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইউরোপতথা সমগ্র বিশ্বের জন্য চ্যান্সেলর মার্কেলের দৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনার ভূয়সীপ্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ভারত ও জার্মানির সম্পর্কের গতি-প্রকৃতি থেকেই অনুভব করাসম্ভব তার ফলাফলের পরিপ্রেক্ষিতটি। অনুষ্ঠিতবৈঠকে পরিবেশ সুরক্ষা এবং স্মার্ট নগরী গড়ে তোলার মতো বিষয়গুলি উঠে আসে বলে জানানভারতের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে, জার্মানির উদ্ভাবন প্রতিভা এবং ভারতীয় যুবশক্তিরকর্মোদ্যম স্টার্ট আপ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এক দারুণ কাজ করবে। ইঞ্জিনিয়ারিং, পরিকাঠামো এবং দক্ষতা বিকাশের মতো ক্ষেত্রগুলিতে উৎকর্ষসাধনের লক্ষ্যে ভারতের অনুসন্ধান প্রচেষ্টার কথা তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। জলবায়ুপরিবর্তন সম্পর্কিত এক প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী প্রকৃতির লালন ও সুরক্ষায়ভারতের কালোত্তীর্ণ মূল্যবোধের কথা বিবৃত করেন। আগামী ২০২২ সালের মধ্যেপুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির উৎস থেকে ১৭৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের অঙ্গীকারেরকথাও প্রসঙ্গত স্মরণ করেন তিনি। প্রকৃতির সুরক্ষার ওপর জোর দিয়ে শ্রী মোদী বলেন,ভবিষ্যৎ প্রজন্মের কল্যাণ ও মঙ্গল নিয়ে ছিনিমিনি খেলা শুধুমাত্র অনৈতিক একটি কাজইনয়, তা এক অপরাধ বিশেষও। এরআগে, আন্তঃসরকারি পরামর্শ বৈঠককালে নিয়ম-নীতি ভিত্তিক বিশ্ব শৃঙ্খলা গড়ে তোলারকাজে ইউরোপীয় ইউনিয়নের বিশেষ ভূমিকার ওপর গুরুত্ব দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী । এদিনদু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় মোট ১২টি চুক্তি। তিনি বলেন, সহযোগিতা ও সহমতের মধ্য দিয়েই গণতন্ত্র শক্তিশালী হয়েছে;সংখ্যাগরিষ্ঠ বা সংখ্যালঘিষ্ঠের ধারণা সবসময়ই শেষ অবলম্বন| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সিকিমের পাকিয়ং বিমানবন্দরের উদ্বোধন করলেন। হিমালয়ের এই রাজ্যটিতে এটিই হল সিকিমের প্রথম বিমানবন্দর এবং দেশের মধ্যে শততম বিমানবন্দর। এই উপলক্ষ্যে এক বিরাট জনসভায় প্রধানমন্ত্রী আজকের এই দিনটিকে সিকিমের তথা সারা দেশের জন্য একটি ঐতিহাসিক দিন বলে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পাকিয়ং বিমানবন্দর উদ্বোধনের সঙ্গে সঙ্গে দেশ বিমানবন্দরের ক্ষেত্রে সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছে। প্রধানমন্ত্রী সিকিমের নবীন ক্রিকেট খেলোয়াড় নীলেশ লামিচানে-র নাম উল্লেখ করেন, সম্প্রতি যিনি ঐ রাজ্য থেকে প্রথম ক্রিকেট খেলোয়াড় হিসেবে বিজয় হাজারে ট্রফিতে শতরান করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পাকিয়ং বিমানবন্দর সিকিমের যোগাযোগ ব্যবস্হাকে অনেকটাই সহজ করবে। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের সুবিধার্থে বিমানবন্দরটি উড়ান প্রকল্পের আওতায় রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র উত্তরপূর্বাঞ্চলে দ্রুত গতিতে পরিকাঠামোগত ও মানসিক যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ুত্র-পূর্বাঞ্চলের বিকাশের কাজ খতিয়ে দেখতে, একাধিকবার তিনি ব্যক্তিগতভাবে ঐ অঞ্চলের রাজ্যগুলি সফর করেছেন। এছাড়া, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরাও নিয়মিতভাবে উত্তরপূর্বাঞ্চলে সফর করেন। এর প্রতিভফলন বাস্তবে দেখা যাচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। বিমান ও রেল যোগাযোগ ব্যবস্হার সম্প্রসারণ, উন্নত রাস্তা, বড় বড় উড়ালপুল ইত্যাদির উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমানে দেশের ১০০টি বিমানবন্দরের মধ্যে ৩৫টি বিগত চার বছরে চালু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সিকিমের জৈব চাষের ক্ষেত্রে উন্নতির উল্লেখ করেন। নতুন প্রস্তাবে বলা হয়েছে, ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় কাশ্মীরের বাস্তুচ্যুতদের জন্য রাজ্য সরকারের অধীনে অতিরিক্ত ৩০০০টি চাকরীর পদ সৃষ্টি করা হবে এবং যেসব বাস্তুচ্যুত কাশ্মীরিরা চাকরী পাবেন, তাদের জন্য কাশ্মীর উপত্যকায় সাময়িক আবাসন নির্মাণ করা হবে। এই প্রস্তাবগুলি রূপায়ণের জন্য আর্থিক ব্যয়ভার ভারত সরকার বহন করবে। এর আগে ২০০৮ সালে, কাশ্মীর উপত্যকায় বাস্তুচ্যুতদের ফিরিয়ে আনতে ১৬১৮.৪০ কোটি টাকার প্যাকেজ ঘোষণা করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সংযুক্ত আরব আমীর শাহীর প্রধানমন্ত্রী ও উপ-রাষ্ট্রপতি তথা দুবাইয়ের শাসক মহামান্য শেখ মহম্মদ বিন রশিদ আল-মাকতুম – এর পুত্র মহামান্য শেখ রশিদ বিন মহম্মদ আল-মাকতুম – এর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এক চিঠিতে জানিয়েছেন, “আপনার যোগ্য পুত্র মহামান্য শেখ রশিদ বিন মহম্মদ আল-মাকতুম – এর সহসা অকাল মৃত্যুর খবর পেয়ে আমি অত্যন্ত দুঃখিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সাহস ও শৌর্যের প্রতীক এবং ভারতের গৌরব ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ`কে শিবাজী জয়ন্তীতে আমার প্রণাম। শিবাজী মহারাজ রণক্ষেত্রে নিজের শক্তি প্রদর্শন করেছিলেন এবং প্রশাসনিক ক্ষেত্রেও দক্ষতার ছাপ রেখেছিলেন। সুশাসনের মাধ্যমে তিনি বহু মানুষের জীবনকে প্রভাবিত করেছিলেন। ছত্রপতি শিবাজীর জীবন আমাদের সর্বদাই অনুপ্রাণীত করে।” আমাকে বলা হয়েছে যে নাইজেরিয়ার বন্ধুরা একটি শিক্ষা সফরে এসেছেন, এটা দেখার জন্য যে, ভারতে স্বচ্ছ ভারত মিশন এত নাটকীয় সাফল্য কিভাবে পেল, এবং এই সাফল্যকে আপনারা কিভাবে নাইজেরিয়াতে প্রয়োগ করতে পারবেন! আমি সর্বান্তকরণে আপনাদের সাফল্য কামনা করি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বুধবারের (২৬ সেপ্টেম্বর) বৈঠকে নীতি আয়োগ ও রুশ ফেডারশনের অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রকের মধ্যে সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিল্প এবং আঞ্চলিক উন্নয়ন কর্মসূচির ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। উল্লিখিত ক্ষেত্রগুলিতে সহযোগিতার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখে একটি কৌশল স্থির করা ও তা রূপায়ণের কথা এই সমঝোতায় বলা হয়েছে। দুই দেশের নিজস্ব শক্তি, বাজার, প্রযুক্তি এবং নীতি সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিয়ে বোঝাপড়ার একটি কাঠামো ও উপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার কথা এই সমঝোতা স্মারকে বলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (১৯শে জানুয়ারি) ভারতের চলচ্চিত্রের জাতীয় সংগ্রহালয়ের নতুন ভবন উদ্বোধন করবেন। জাতীয় সংগ্রহালয় পরিদর্শন করে প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত জনসাধারণের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। দক্ষিণ মুম্বাইয়ে ফিল্মস ডিভিশন কমপ্লেক্সে অবস্থিত সংগ্রহালয় দুটি বিল্ডিং – ঐতিহাসিক গুলসান মহল ও নিউ মিউজিয়াম বিল্ডিং জুড়ে প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। নিউ মিউজিয়াম বিল্ডিং-এ চারটি তল রয়েছে: গান্ধী ও চলচ্চিত্র – প্রথম তল, শিশুদের জন্য চলচ্চিত্র স্টুডিও – দ্বিতীয় তল, প্রযুক্তি, সৃজনশীলতা ও ভারতীয় চলচ্চিত্র – তৃতীয় তল এবং সারা ভারত জুড়ে চলচ্চিত্র – চতুর্থ তল। নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী শ্রী কমল থাপা আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেন । নেপালের উপ-প্রধানমন্ত্রী ও বিদেশমন্ত্রী হিসাবে দায়িত্ব নেওয়ায় শ্রী থাপাকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদি । একই সাথে নেপালের নবগঠিত সরকারের প্রতিও প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শ্রী কমল থাপা নেপালের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। বিশ্ব যক্ষ্মা দিবসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন : ভারত সরকার দেশকে যক্ষ্মা মুক্ত করার কাজ ব্রত হিসাবে গ্রহণ করেছে। রাষ্ট্রসংঘ দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি জনগণকে তাঁর শুভেচ্ছা জানিয়েছেন | রাষ্ট্রসংঘের বহু পদক্ষেপের রূপায়নে ভারত সামনের সারিতে রয়েছে এবং রাষ্ট্রসংঘের বিভিন্ন প্রয়াসে সহযোগ দিতে সবচেয়ে সেরাটা দেওয়ার জন্য ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ | প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য ভারত ও কানাডার মধ্যে সমঝোতা স্মারকের (মউ) অনুমোদনদিয়েছে| এই মউ ভারত ও কানাডার শিক্ষা-প্রতিষ্ঠান এবং গবেষণা ও উন্নয়ন (আর. এন্ডডি.) ক্ষেত্রের সংস্থার মধ্যে বৈজ্ঞানিক সহযোগিতার জন্য সহায়তা করবে এবং এর জন্যএকটি পদ্ধতি প্রদান করবে| *ভারতেরবিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগ এবং কানাডার ‘ প্রাকৃতিকবিজ্ঞান ও প্রকৌশল গবেষণা পরিষদ ’ (এন.এস.ই.আর.সি.)-এর মধ্যে হওয়া এই মউ-এর মধ্য দিয়ে গবেষণা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রেএকটি উদ্ভাবনামূলক মডেলকে রূপায়িত করা হবে| *এই মউ-এরমাধ্যমে ভারত ও কানাডার মধ্যে বহুমুখী গবেষণা অংশিদারিত্বকে সহযোগিতা করার জন্য ‘ ইন্ডিয়া-কানাডাসেন্টার ফর ইনোভেটিভ মাল্টিডিসিপ্লিনারি পার্টনারশিপ টু এক্সেলারেট কমিউনিটিট্রান্সফরমেসন এন্ড সাসটেইনেবিলিটি ’ (আই.সি.-ইমপ্যাক্টস) কর্মসূচিকে সহায়তা করা হবে| *গবেষণা ওউন্নয়ন প্রকল্পের লক্ষ্য হচ্ছে, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির ব্যবহারের মধ্য দিয়ে সমাধানপ্রদান করে সামাজিক রূপান্তরকে ত্বরান্বিত করা| *এতেঅংশগ্রহণকারীদের মধ্যে রয়েছেন, ভারত ও কানাডার বৈজ্ঞানিক সংস্থা, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও গবেষণা-উন্নয়ন গবেষণাগারের গবেষকগণ| *পারস্পরিকসহযোগিতার যেসব ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে, নিরাপদ ওদীর্ঘস্থায়ী পরিকাঠামো এবং সুসংহত জল ব্যবস্থাপনা| *এই মউ ভারতও কানাডার বৈজ্ঞানিক সংস্থা, বৈজ্ঞানিক ও বিশেষজ্ঞদের মধ্যে সংযোগ এবংপ্রাতিষ্ঠানিক যোগাযোগ তৈরিতে সহায়তা করবে| ২০১৮ সালের ২৪শে ডিসেম্বর ওড়িশা সফর করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আইআইটি ভুবনেশ্বর চত্বরে তিনি আজ পাইকা বিদ্রোহের স্মরণে একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন। ওড়িশায় ১৮১৭ সালে ব্রিটিশ শাসনের বিরোধিতায় পাইকা বিদ্রোহ হয়। ভুবনেশ্বরে উৎকল বিশ্ববিদ্যালয়ে পাইকা বিদ্রোহের ওপর একটি চেয়ার স্থাপনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ললিত গিরি সংগ্রহশালার উদ্বোধন করেন। শ্রী নরেন্দ্র মোদী আইআইটি ভুবনেশ্বর জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। তিনি ভুবনেশ্বরে নতুন ইএসআইসি হাসপাতালেরও সূচনা করেন। তিনি একটি পাইপ লাইন ও সড়ক প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন। অনুষ্ঠানের ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ প্রায় ১৪ হাজার কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্প চালু করা হয়েছে বা ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করা হয়েছে। পূর্ব ভারতের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার বিশেষ লক্ষ্য নিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আইআইটি ভুবনেশ্বর ওড়িশার শিল্পোন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা নেবে এবং জনগণের জীবনযাত্রার উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওড়িশার পরিকাঠামো, তেল ও গ্যাস পাইপ লাইন, সড়ক যোগাযোগ, পরিকাঠামো ও স্বাস্থ্য পরিষেবা সম্প্রসারণের পরিকল্পনা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (২১শে ফেব্রুয়ারি) সিওলের ইয়োনসেই বিশ্ববিদ্যালয়ে মহাত্মা গান্ধীর আবক্ষ মূর্তি উন্মোচন করেন। অনুষ্ঠানে, দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতি শ্রী মুন জে-ইন, ফার্স্ট লেডি কিম জাং-সুক এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রাক্তন মহাসচিব শ্রী বান কি-মুন উপস্থিত ছিলেন। শ্রী মোদী বলেন, সন্ত্রাসবাদ এবং জলবায়ু পরিবর্তন – এই দুই সমস্যার মোকাবিলা করার ক্ষেত্রে বাপু’র আদর্শ যথেষ্ট সাহায্য করবে। তিনি আরও বলেন, বাপু আমাদের দেখিয়েছেন প্রকৃতির সঙ্গে সমন্বয় রেখে কিভাবে জীবনযাপন করা যায় এবং কিভাবে কার্বন নিঃসরণ কমানো যায়। তিনি এও আমাদের দেখিয়েছেন যে আমাদের আগামী প্রজন্মের জন্য পরিচ্ছন্ন এবং সবুজ পৃথিবী রেখে যাওয়ার বিষয়টিও অত্যন্ত জরুরি। প্রসঙ্গত, দক্ষিণ কোরিয়ার সবথেকে মর্যাদাপূর্ণ বিশ্ববিদ্যালয় হল ইয়োনসেই বিশ্ববিদ্যালয়। ভারত ও মালয়েশিয়া এই দুটি দেশই এক সময় একই ঔপনিবেশিকতার শিকার হয়ে পড়েছিল। মাত্র এক দশকের ব্যবধানে আমরা দুটি দেশই অর্জন করেছি আমাদের স্বাধীনতা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মালয়েশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের কাছে স্বাধীন ভারত অনেক দিক দিয়েই ঋণী। বিভিন্ন সময়ে ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রাম রচিত হয়েছে মালয়েশিয়ার ভারতীয়দের সংগ্রাম ও উৎসর্গের মধ্য দিয়ে। এখানকার বর্তমান ভারতীয়দের পূর্ব পুরুষরা দলে দলে যোগ দিয়েছিলেন নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বোস এবং আজাদ হিন্দ ফৌজের সঙ্গে। মহিলারা বিপুল সংখ্যায় স্বচ্ছন্দ গৃহকোণ থেকে বেরিয়ে এসে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে গেছেন সুভাষ চন্দ্র বোসের সঙ্গে। তিনি বলেন, ৭০ বছর আগে এক ভয়ঙ্কর ও করুণ পরিণতির মধ্য দিয়ে বিশ্ব যুদ্ধের অবসান ঘটেছে। তাই, এই যুদ্ধের প্রভাব পড়েছে ভারত ও মালয়েশিয়া দুটি দেশের ওপরই। তাঁদের সাফল্য ভারতকে গর্বিত করে তুলেছে। এ দেশের ৮০ কোটি নাগরিক বয়সে তরুণ। তাই, ভারতকে তারুণ্যের দেশ বললেও অত্যুক্তি করা হয় না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের সাফল্য নজিরবিহীন। খাদ্যশস্য, ফলমূল, শাকসব্জি এবং দুগ্ধ উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারত একটি অগ্রণী দেশ। দেশের নাগরিকদের জীবনযাত্রার মান উন্নত করতে আমাদের বিজ্ঞানীরা মহাকাশ শক্তিকে ব্যবহারের কাজে যুক্ত রয়েছেন। জ্বালানি শক্তি ও চিকিৎসার কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে পরমাণু শক্তিকে। আমরা উদ্ভাবন করেছি এমন কিছু প্রতিষেধক ও ওষুধ যা পৌঁছে গেছে দরিদ্রতম মানুষটিরও নাগালের মধ্যে। বিশ্বের তথ্যপ্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের অনেকেই ভারতীয়। আমাদের চিকিৎসক ও প্রযুক্তিবিদরা পরিষেবা দিয়ে যাচ্ছেন বিশ্বের প্রতিটি প্রান্তেই। আমাদের উৎপাদন পৌঁছেছে এমনই এক গুণমানে যাতে বিশ্ব বাজারে সমাদৃত হচ্ছে ভারতীয় পণ্যসামগ্রী। বিশ্বের বিভিন্ন দেশের সঙ্গে আমাদের মৈত্রী ও সহযোগিতার সম্পর্ক গড়ে তুলছে শান্তির বাতাবরণ। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতা রক্ষার কাজে নিরলস পরিশ্রম করে চলেছে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী। এমনকি, বিশ্বের যেকোন প্রান্তে বিপর্যয় মোকাবিলার কাজেও তাঁরা সদা প্রস্তুত। শুধু তাই নয়, বিশ্বে শান্তি রক্ষার কাজেও তাঁরা এগিয়ে গেছে নির্দ্বিধায়। কিন্তু আমাদের যাত্রাপথ সুবিস্তৃত। তাই, অনেক কিছু করাই এখনও বাকি রয়ে গেছে। যে চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা আমাদের করতে হবে এবং যে লক্ষ্য পূরণের পথে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে সেগুলিও আমরা স্থির ও চিহ্নিত করে ফেলেছি। আমাদের বর্তমান সরকার এক পরিবর্তন তথা রূপান্তরের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। আধুনিক অর্থনীতির সুফল সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে দিয়ে দারিদ্র্য নির্মূল করার কাজ আমরা শুরু করেছি। পর্যটন ক্ষেত্রে আমরা ব্যবস্থা করেছি প্রকৃতি সংরক্ষণের যাতে উপকৃত হবে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্ম। কিন্তু ভারতীয়দের মেধাশক্তি ও উদ্যমের ওপর আমাদের রয়েছে আশা ও ভরসা। দেশের নাগরিকদের ঐক্যবদ্ধ শক্তির ওপর আমাদের রয়েছে দৃঢ় বিশ্বাস। সমস্ত স্তরেই দুর্নীতি উচ্ছেদে আমরা কৃতসঙ্কল্প। এই অঞ্চল হল সবচেয়ে গতিশীল ও শান্তিপূর্ণ একটি অঞ্চল। এখানে রয়েছে মেধা, উদ্যম, সংস্কৃতি ও নিরলস প্রচেষ্টার এক চমৎকার সহাবস্থান। তাই, এই অঞ্চলে আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্ক দ্রুততার সঙ্গে অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাচ্ছে। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে মালয়েশিয়ার সংস্থাগুলি যথেষ্ট সুনাম অর্জন করেছে। ভারতে তাদের উজ্জ্বল উপস্থিতি আমরা সর্বদাই অনুভব করি। একইভাবে ভারতের বহু সংস্থাই যুক্ত রয়েছে মালয়েশিয়ায় নানান উন্নয়ন প্রচেষ্টার মধ্যে। মালয়েশিয়ায় রেল পরিকাঠামোকে আরও উন্নত করে তুলতে কাজ করছে ভারতীয় সংস্থা ইরকন। মালয়েশিয়ায় বর্তমানে রয়েছে ১৫০-টিরও বেশি ভারতীয় সংস্থা। ৫০-টিরও বেশি ভারতীয় তথ্যপ্রযুক্তি সংস্থা মালয়েশিয়ায় উন্নয়নের কাজে যুক্ত রয়েছে। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির মধ্যে মালয়েশিয়া হল আমাদের বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত ও মালয়েশিয়া দুটি দেশই নাগরিকদের জীবনযাত্রা নিরাপদ করে তুলতে সতত প্রচেষ্ট। আমাদের রয়েছে শক্তিশালী প্রতিরক্ষা সম্পর্ক। ভারতীয় বিমানবাহিনীর কর্মীরা মালয়েশিয়ার বিমানবাহিনীর কর্মীদের দু’বছর ধরে প্রশিক্ষণ দিয়ে এসেছে। জল, স্থল, অন্তরীক্ষ – সর্বত্রই প্রসারিত আমাদের মৈত্রী ও সহযোগিতার সম্পর্ক। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় দু’দেশের নিরাপত্তা সংস্থাগুলি একযোগে কাজ করে চলেছে। এই ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার জন্য মালয়েশিয়া সরকারকে আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। সন্ত্রাসবাদ বর্তমান বিশ্বে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ। কারণ সন্ত্রাস কোন ভৌগোলিক সীমারেখা মানে না। তাই, সন্ত্রাস থেকে ধর্মকে আমাদের বিচ্ছিন্ন করতেই হবে। সহযোগিতার সম্পর্ককে বলিষ্ঠতর করে তুলতে আমরা গড়ে তুলতে পারি এক আন্তর্জাতিক আইন ব্যবস্থা। দু`দেশের প্রাচীন ঐতিহাসিক, ধর্মীয় ও সাংস্কৃতিক যোগসূত্র বর্তমান অংশীদারিত্বের ভিতটাকে শক্ত করেছে বলে শ্রী মোদী জানান। তাঁরা দু`জনে মিলে অর্থনৈতিক সহযোগিতার সবরকম সুযোগসুবিধা কাজে লাগাতে ইচ্ছুক। দুটি দেশের ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে সমীকরণ স্থাপনের বিষয়ে শ্রী মোদী সমর্থন জানিয়েছেন। শ্রীলঙ্কায় ভারতের বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও আরও বেশি সংখ্যক ভারতীয় পর্যটকও দেশে যাওয়ার বিষয়ে সম্মতি প্রকাশ করেছেন। চিরাচরিত ও অচিরাচরিত – দু`ধরণের শক্তির ক্ষেত্রে সহযোগিতা বিস্তারের বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতি সিরিসেনা আলোচনা করেন। শীঘ্রই দু`দেশের বাণিজ্য সচিবরা দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক সম্পর্কের মূল্যায়ন করবেন। এছাড়া, তাঁরা দু`জন দু`দেশের মধ্যে বায়ুপথ ও সমুদ্রপথের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নসাধন করতে ইচ্ছুক। শ্রী মোদী বলেন, অসামরিক পরমাণু সহযোগিতা বিষয়ক দ্বিপাক্ষিক চুক্তিটি দু`দেশের পারস্পরিক আস্থার আরেকটি উদাহরণ। শ্রী মোদী আরও জানান যে, তাঁরা সামরিক ও নিরাপত্তা সহযোগিতা বিস্তার করতে সহমত হয়েছেন। তাঁরা নিজেদের মধ্যে নেট ক্ষেত্রের নিরাপত্তা সহযোগিতা ও মালদ্বীপ`কে নিয়ে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছেন। শ্রীলঙ্কায় ভারতের সাহায্যপুষ্ট অভ্যন্তরীণভাবে স্থান চ্যুত ব্যক্তিদের জন্য প্রকল্পটি দারুন এগিয়েছে। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ২৭ হাজারের বেশি গৃহনির্মাণ করা হয়েছে। দু`জনেই প্রকল্পের অগ্রগতির বিষয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী সিরিসেনাকে আশ্বস্ত করে বলেন, ভারত শ্রীলঙ্কার বিকাশ ক্ষেত্রের অংশীদার হতে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। সেদেশের পরিকাঠামো সহ নানা ক্ষেত্রের উন্নয়নমূলক কাজে অংশীদারও হবে। শ্রী মোদী বলেন, কৃষি ক্ষেত্রের চুক্তিটি তাঁকে আনন্দিত করেছে। এছাড়া শ্রী মোদী জানান যে, দুটি দেশের মৎস্যজীবীদের বিষয়টিকে অসীম গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। শ্রী মোদী বলেন, ক্রিকেটের মতো সংস্কৃতিও দু`দেশের মধ্যে সুদৃঢ় বন্ধন গড়ে তুলেছে। সেজন্য আজকে স্বাক্ষরিত হওয়া সাংস্কৃতিক সহযোগিতার কর্মসূচিটি দু`দেশের সাংস্কৃতিক আদান-প্রদান ও মানুষে মানুষে যোগাযোগও বাড়াবে। শ্রী মোদী আনন্দ প্রকাশ করে জানান যে, এখন শ্রীলঙ্কা নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয় প্রকল্পে যুক্ত হয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা পালেমব্যাঙ্গে অনুষ্ঠিত অষ্টাদশ এশিয়ান গেমস্‌-এ পুরুষদের ট্রিপল জাম্প বিভাগে স্বর্ণ পদক জয়ী অর্পিন্দর সিং-কে অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “ কঠোর পরিশ্রমী ও প্রতিভাবান অর্পিন্দর সিং পুরুষদের ট্রিপল জাম্প বিভাগে স্বর্ণ পদক সুনিশ্চিত করেছেন। হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “হিমাচল প্রদেশ রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসে সেখানকার অধিবাসীদের জানাই শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। আমারপ্রিয় দেশবাসী, নমস্কার! আজ সকাল-সকাল দিল্লির তরুণ বন্ধুদের সঙ্গে কিছু সময়কাটানোর সুযোগ আমার হয়েছিল। আমার বিশ্বাস আগামী দিনগুলিতে পুরো দেশজুড়ে ছড়িয়ে যাবেখেলা নিয়ে প্রতিটি তরুণের উ ৎসাহ-উদ্দীপনার বাতাবরণ। আমরা সবাইজানি কিছুদিনের মধ্যেই বিশ্ব-খেলাধুলোর ক্ষেত্রে সবথেকে বড় ক্রীড়ার মহাকুম্ভ আয়োজিতহতে চলেছে। বারবার আমাদের কানে প্রতিধ্বনিত হবে ‘রিও’। সারা বিশ্ব খেলবে, পৃথিবীরপ্রতিটি দেশ নিজ নিজ খেলোয়াড়দের ওপর তীক্ষ্ণ নজর রাখবে, আপনারাও রাখবেন। আমাদেরআশা-প্রত্যাশা তো অনেক, কিন্তু রিওতে খেলার জন্য যাঁরা গেছেন, সেইসব খেলোয়াড়দের উৎসাহকেআরও জোরদার করার কাজ ১২৫ কোটি দেশবাসীর। আজ দিল্লিতে ভারত সরকার ‘ Run for Rio ’,‘খেলো আর বাঁচো, খেলো আর প্রস্ফুটিত হও’ শীর্ষক এক বিশাল এবং সুন্দর দৌড়ের আয়োজনকরেছে। আমিও আগামী দিনে যেখানেই থাকি না কেন, আমাদের খেলোয়াড়দের উৎসাহিত করারজন্য কিছু না কিছু করব। যে সমস্ত খেলোয়াড় এই পর্যায়ে এসে পৌঁছন তাঁরা অনেক কঠিনপরিশ্রমের পরই এই জায়গায় এসে পৌঁছন। আমিও ১২৫ কোটি দেশবাসীর মত এক দেশবাসী, এক নাগরিক হিসাবে আমাদের এই সবখেলোয়োড়দের উৎসাহ বাড়ানোর জন্য আপনাদের সঙ্গে থাকব। এক যুবক, শ্রীমান অঙ্কিত, আমাকেরাষ্ট্রপতি আব্দুল কালাম-জীর মৃত্যুবার্ষিকী স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। গত সপ্তাহেআব্দুল কালাম-জীর প্রয়াণ দিবসে দেশ এবং বিশ্ব শ্রদ্ধাঞ্জলি জানিয়েছে। যখনই আব্দুলকালাম-জীর নাম করা হয়, তখনই বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ক্ষেপনাস্ত্র – ভবিষ্যতের একশক্তিশালী ভারতের ছবি আমাদের চোখের সামনে ভেসেওঠে। আর এজন্য অঙ্কিত লিখেছেন যে আপনার সরকার আব্দুল কালাম-জীর স্বপ্নকে সার্থককরার জন্য কি করছে? আপনাদের যদি এই পরিবর্তনের দৌড়ে পা মেলাতে হয়, পরিবর্তনের দৌড়ে এগিয়েথাকতে হবে। গবেষণা ও আবিষ্কার – যা প্রযুক্তির প্রাণ, সেদিকে নজর দিতে হবে। গবেষণাও আবিষ্কার যদি না হয়, তাহলে জমে থাকা জল যেমন দুর্গন্ধ ছড়ায়, তেমনি প্রযুক্তিওবোঝা হয়ে ওঠে। যদি আমরা গবেষণা ও আবিষ্কার বাদ দিয়ে পুরনো প্রযুক্তিকে আঁকড়ে ধরেথাকি, তাহলে আমরা এই বিশ্বের পরিবর্তনশীল যুগের বাইরে পড়ে থাকব। আর এজন্যই নতুনপ্রজন্ম বিজ্ঞানের প্রতি, প্রযুক্তির উন্নয়নের জন্য, গবেষণা ও আবিষ্কারের প্রতিযাতে আকৃষ্ট হয়, সেজন্য সরকার অনেক ব্যবস্থা নিয়েছে। তাই তো আমি বলি, ‘ Let us aim to innovate ’ – আসুন আমরা এগোই গবেষণারলক্ষ্যে। নীতি আয়োগের মাধ্যমে Atal Innovation Mission –কে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। আমাদের যদি পরবর্তী প্রজন্মকে উদ্যোগী করতে হয়, তাহলে আমাদেরছেলেদের এই কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে। আর এজন্য ভারত সরকার Atal Tinkering Labs তৈরি করার উদ্যোগ নিয়েছে। আবিষ্কারের সঙ্গেসরাসরি সম্পর্কিত – IncubationCentre বা গবেষণার আঁতুড়ঘর। আমাদেরকাছে যদি শক্তিশালী এবং উন্নতমানের গবেষণাগার থাকে, তাহলে আবিষ্কারের জন্য, নতুনউদ্যোগের জন্য, তাকে কাজ লাগানোর জন্য, তাকে এক নিশ্চিত লক্ষ্যে পৌঁছে দেওয়ার জন্যএক পরিকাঠামো তৈরি হয়। যেমন নতুন গবেষণাগার তৈরির প্রয়োজন আছে, তেমনই পুরনোগবেষণাগারকে উন্নত মানের করে তোলারও প্রয়োজন আছে। আর আমি যে ‘অটল ইনকিউবেশনেরসেন্টার’-এর কথা বলছি, তাকে দশ কোটি টাকার এক বড় আর্থিক অনুদান দেওয়ার লক্ষ্যেভাবনা-চিন্তা করছে ভারত সরকার। ভারত নানা সমস্যার সঙ্গে লড়াই করছে। ভারত সরকার আমাদের সমস্যাগুলির সমাধানের জন্য এই ধরনের নতুনপ্রযুক্তির সন্ধান দিতে পারলে উদ্ভাবনকারীকে বিশেষভাবে পুরস্কৃত করে উৎসাহ দিতেচায়। আমি আনন্দিত যে এব্যাপারে মানুষের যথেষ্ট আগ্রহ আছে। আমাদের নিত্যকার সমস্যা সমাধানেরজন্য প্রযুক্তির ব্যবহার, আমাদের সমস্যাসঙ্কুল জীবন থেকে মুক্তির জন্য – জীবনযাত্রাকেসহজ করার জন্য আমাদের নবীন প্রজন্ম যত কাজ করবে, তাদের অবদান একবিংশ শতকের আধুনিকভারতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। আর সেটাই হবে আব্দুল কালাম-জীরপ্রটি আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধাঞ্জলি। তাই যতদিনের জন্যযতগুলো ঔষধ দেওয়া হয়েছে, সেই কোর্সটা পুরো করাটা খুবই দরকারী, শরীর সুস্থ হয়েগেছে, তাই এখন আর দরকার নেই, এটা যদি আমরা করি, তাতে রোগের জীবানুদের সুবিধা হয়েযাবে, আর ওই সব জীবানু আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। যেসব জীবানু যক্ষ্মা ও ম্যালেরিয়াছড়ায় সেগুলি দ্রুত গতিতে নিজেদের মধ্যে এতটাই পরিবর্তন আনছে যাতে ঔষধের কর্মক্ষমতানষ্ট হয়ে যায়। ডাক্তারি ভাষায় একে ‘অ্যান্টি-বায়োটিক রেজিস্ট্যান্স’ বলে। সেইজন্যনিয়ম মেনে অ্যান্টি-বায়োটিকের ব্যবহার করা উচিত। সরকার ‘অ্যাণ্টি-বায়োটিকরেজিস্ট্যান্স’-কে বন্ধ করতে বদ্ধপরিকর। আপনি হয়তো দেখেছেন, আজকালঅ্যাণ্টি-বায়োটিকের যে ঔষধ বিক্রি হয়, তার যে পাতা থাকে, তাতে একটা লাল লাইন এঁকেআপনাদের সাবধান করে দেওয়া হয়। আপনি এর প্রতি নিশ্চয়ই নজর দেবেন। যখনস্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় কথা হচ্ছে, আমি আরেকটি কথা এর সঙ্গে যোগ করতে চাই। এটা ঠিক যে গত এক দশকে মায়েদের প্রসবকালীন মৃত্যুর হার কমেছেকিন্তু তবুও আজও অনেক গর্ভবতী মায়েদের জীবন বাঁচানো সম্ভবপর হয় না। গর্ভাবস্থায় বাপরে রক্তাল্পতা, প্রসবের সময় সংক্রমণ, উচ্চ রক্তচাপ – কতরকমের অজানা সংকট কখন তাঁরজীবনকে নষ্ট করে দেবে কেউ জানে না। এই সব কথা মনে রেখে ভারত সরকার গত কিছু মাসথেকে এক নতুন অভিযান শুরু করেছে – ‘প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযান’। মা ও সন্তান – দুজনেরই প্রাণ বাঁচানো সম্ভব হবে, আর আমি স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞ–দেরবিশেষ ভাবে বলতে চাই, আপনারা কি মাসের একদিন, নয় তারিখ দরিদ্র মায়েদের বিনা পয়সায়চিকিৎসা করতে পারেন না! আমার ডাক্তার ভাই-বোনেরা কি বছরে বারো দিন দরিদ্রদের এইকাজের জন্য নিজেদের নিয়োজিত করতে পারেন না? আমার বিশ্বাস, আপনিঅবশ্যই সামিল হবেন। আমারপ্রিয় দেশবাসী, আজ সমগ্র পৃথিবী ঋতু পরিবর্তন, বিশ্ব উষ্ণায়ণ, পরিবেশ নিয়ে বিশেষভাবে চিন্তাগ্রস্ত। দেশ-বিদেশে সামগ্রিকভাবে এর আলোচনা হচ্ছে। আদিকাল থেকে ভারতেএই বিষয়ে জোর দেওয়া হয়েছে। গীতাতে ভগবান শ্রীকৃষ্ণ বলছেন –‘অশ্বত্থ: সর্ববৃক্ষানাং’ অর্থাৎ সকল বৃক্ষের মধ্যে আমি অশ্বত্থ। যে গাছ দান করে, তাঁকে ওই গাছসন্তানের মতো পরলোকেও পার করে দেয়। সেই জন্য যেসব মাতা-পিতা নিজেদের কল্যাণের কথাভাবেন, ভালো ভালো গাছ লাগিয়ে সন্তানের মতো লালন-পালন করুন। আর এরকম দৃষ্টান্ত অনেকেইরেখেছেন। গাছ লাগানোর এক জন-আন্দোলন সহজ ভাবে তৈরি হতে পারে। আমি কৃষক ভাইদেরবারবার বলি, আমাদের খেতের ধারে যে আল দিয়ে জমি নষ্ট করি, তার পরিবর্তে কেন আমরা বড়,লম্বা গাছের চারা লাগাই না! বর্তমানে ভারতবর্ষে ঘর বানানোর জন্য, আসবাবপত্রবানানোর জন্য কোটি কোটি টাকার কাঠের গুঁড়ি বিদেশ থেকে আমদানী করতে হয়। বিগত দিনে অনেক রাজ্য এই বর্ষা ঋতুর সুবিধা নিয়ে অনেক অভিযান চালিয়েছে,ভারত সরকারও এক CAMPA আইন সম্প্রতি পাশ করেছে, এইআইনের মাধ্যমে প্রায় চল্লিশ হাজার কোটিরও বেশি টাকা রাজ্যগুলিকে বৃক্ষরোপণের জন্যবিলি করা হচ্ছে। আমাকে বলা হয়েছে যে, মহারাষ্ট্র সরকার পয়লা জুলাই সমগ্র রাজ্যেরপ্রায় ২ কোটি ২৫ লক্ষ গাছের চারা লাগিয়েছে, আর আগামী বছর ওরা তিন কোটি চারালাগানোর লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেছে। সরকার এক জন-আন্দোলন শুরু করে দিয়েছে। রাজস্থানএক মরুভূমি-র রাজ্য – এতবড় বন-মহোৎসব পালন করেছে এবং পঁচিশ লক্ষ চারা লাগানোরসংকল্প নিয়েছে। রাজস্থানে পঁচিশ লাখ চারাগাছ লাগানো ছোটোখাটো ব্যাপার নয়। যাঁরারাজস্থানের মাটির সঙ্গে পরিচিত তাঁরাই বুঝতে পারবেন কত কঠিন কাজ। অন্ধ্রপ্রদেশও২০২৯ সালের মধ্যে রাজ্যের সবুজায়ন ৫০ শতাংশে বাড়ানোর লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে। কেন্দ্রসরকার যে ‘গ্রীন ইণ্ডিয়া মিশন’ চালাচ্ছে, সেই যোজনার মাধ্যমে রেলকর্তৃপক্ষ সবুজায়নকরছে। এবছর গুজরাত ‘আমবন’, ‘একতাবন’, ‘শহীদ বন’ নামক অনেক প্রকল্পকে বন-মহোৎসব হিসাবে পালন করেছে এবং কোটি কোটিগাছ লাগানোর অভিযান চালিয়েছে। আমি সমস্ত রাজ্যের কথা উল্লেখ করতে পারছি না কিন্তুসবাই প্রশংসার যোগ্য। আমারপ্রিয় দেশবাসী, কিছুদিন আগে আমার দক্ষিণ আফ্রিকা যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। এটা আমারপ্রথম যাত্রা, এবং যখনই বিদেশ যাত্রা হয়, তখনই কূটনীতির কথা হয়, শিল্প-বাণিজ্যনিয়ে কথা হয়, সুরক্ষা নিয়ে আলোচনা হয়, কখনো ‘মউ’ সাক্ষরিত হয় – এই সবকিছুই তো হওয়াচাই। কিন্তু আমার কাছে দক্ষিণ আফ্রিকা যাত্রা একরকম তীর্থযাত্রা ছিল। যখনই দক্ষিণআফ্রিকার কথা মনে করা হয়, মহাত্মা গান্ধী এবং নেলসন ম্যাণ্ডেলার কথা মনে আসা খুবইস্বাভাবিক। যখনই এই পৃথিবীতে অহিংসা, প্রেম, ক্ষমা ইত্যাদি শব্দগুলি কানে আসে,তখনই তাঁদের চেহারা আমাদের চোখের সামনে ফুটে ওঠে। আমি আমার দক্ষিণ আফ্রিকা ভ্রমণেরসময় Phoenix Settlement -এ গিয়েছিলাম, যা মহাত্মাগান্ধীর বাসস্থান ‘সর্বোদয়’ নামে পরিচিত। যে ট্রেনে মহাত্মা গান্ধী সফর করেছিলেন,যে ট্রেনের ঘটনায় জনৈক মোহনদাসকে মহাত্মা গান্ধীতে পরিণত করার বীজবপন হয়েছিল, আমারসৌভাগ্য হয়েছিল সেই পিটারমারিৎসবুর্গ স্টেশন থেকে সেই ট্রেনে সফর করার, কিন্তু আমিযে কথা বলতে চাইছি, তা হল, এবার আমার সেই মহান মানুষদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগহয়েছিল যাঁরা নিজেদের জীবন নিয়োজিত করেছেন সকলের সমানাধিকারের জন্য, সকলের সমানসুযোগের জন্য। গীতাতে যে কর্তব্যের কথা বলা হয়েছে,তার সাক্ষাৎ রূপ যেন আমি তাঁদের মধ্যে দেখতে পাচ্ছিলাম। সেই সাক্ষাৎকারটি আমারচিরদিন মনে থাকবে। কোনও সমাজের বা কোনও সরকারের জন্যই সাম্য এবং সমান সুযোগের এরচেয়ে বড় কোনও মন্ত্র হতে পারে না। সকলকে সমান ভাবা এবং সকলকে আপন ভাবার এটাই তো পথযা আমাদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে নিয়ে যায়। আমরা সুন্দর জীবন চাই, বাচ্চাদের ভালোভবিষ্যৎ চাই – প্রত্যেকের প্রয়োজন আলাদা আলাদা। ‘ Priority ’ আলাদা আলাদা হতে পারে, কিন্তু পথ একটাই, আর সেই পথ হলউন্নয়ন, সাম্য, সমান সুযোগ, সকলকে সমান ভাবা এবং সকলকে নিজের ভাবা। আসুন, আমরা সেইভারতীয়দের জন্য গর্ব অনুভব করি, যাঁরা দক্ষিণ আফ্রিকাতেও আমাদের জীবনের মূলমন্ত্রকে সম্বল করে জীবনযাপন করে দেখিয়েছেন। আলিগড়ের কিছু ছাত্র আমার কাছেএসেছিলেন। আলিগড়ের সাংসদ তাঁদের নিয়ে এসেছিলেন, ছেলে-মেয়েগুলির উৎসাহ ছিল দেখারমতো। ওঁরা একটা বেশ বড় অ্যালবাম নিয়ে এসেছিলেন আমাকে তার থেকে ছবি দেখালেন। তাঁরাআলিগড় রেলস্টশনের সৌন্দর্যীকরণ করেছেন। স্টেশনে চমৎকার ছবি এঁকেছেন। শুধু এ-ই নয়,গ্রামে যত প্লাস্টিকের বোতল কিংবা তেলের ক্যানের মতো আবর্জনা পড়ে ছিল, তা খুঁজেখুঁজে জড়ো করে মাটি ভরে গাছ লাগিয়ে ‘ভার্টিক্যাল গার্ডেন’ বানিয়েছেন। এইভাবে তাঁরারেলস্টেশনটিকে সম্পূর্ণ নতুন এক রূপ দিয়েছেন। আপনারা কখনও আলিগড় গেলে স্টেশনটিনিশ্চয়ই দেখবেন। ভারতের বেশ কিছু রেলস্টেশন থেকে ইদানিং আমি এইরকম খবর পাচ্ছি।স্থানীয় মানুষজন তাঁদের রেলস্টেশনগুলির দেওয়ালকে চিত্রকলায় সাজিয়ে নিজেদের এলাকারস্বতন্ত্র পরিচয় রাখছেন। একটি নতুনত্বের আভাস পাওয়া যাচ্ছে। জনসাধারণের অংশগ্রহণেকীরকম পরিবর্তন আনা যায়, এটা তারই উদাহরণ। দেশে এরকম কাজ যাঁরা করছেন, তাঁদেরধন্যবাদ, বিশেষ করে ধন্যবাদ আমার আলিগড়ের সাথীদের। আমারপ্রিয় দেশবাসী, বর্ষা এলেই আমাদের দেশে উৎসবের মরশুম শুরু হয়ে যায়। ভাবুন,বোনকে এমন কোন উপহার দিন, যা তার জীবনকে সত্যি সত্যি সুরক্ষা দেবে। আর এটাই তো যথার্থ সামাজিক সুরক্ষা, রাখীবন্ধনেরসঠিক অর্থই তো এই। আমরা স্বাধীনতার আনন্দ উপভোগ করছি, স্বাধীন নাগরিক হওয়ার গর্বওঅনুভব করছি – এই স্বাধীনতা যাঁরা এনেছিলেন, সেই সব মানুষদের স্মরণ করার এটাই তোসময়। ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ৭৫ বছর এবং স্বাধীনতার ৭০ বছর আমাদের নতুন প্রেরণাদিতে পারে, নতুন উৎসাহ যোগাতে পারে, এবং দেশের জন্য ভালো কিছু করার সংকল্প নেওয়ারউপযুক্ত সময় হয়ে উঠতে পারে। আসুন, আমরা এমন এক পরিবেশ তৈরি করি, যাতে স্বাধীনতাসংগ্রামীদের সংগ্রামের রঙ গোটা দেশে ছড়িয়ে পড়ে, স্বাধীনতার সুবাস চারদিকে অনুভূতহয়। আমার আশা, আপনারাও স্বদেশপ্রেমের প্রেরণায় কিছু না কিছুভালো কাজ করবেন। ‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’-এ তার ছবি অবশ্যই পাঠান। দেশে একটাদেশভক্তির পরিবেশ গড়ে তুলুন। আপনাদের মনেও হয়ত এমন কিছু কথা থাকতে পারে, যাআপনারা চান লালকেল্লার ওই প্রাকার থেকেই সমান গুরুত্ব দিয়ে পেশ করা হোক। আমিআপনাদের আমন্ত্রণ জানাচ্ছি, আপনাদের মনে যে ভাবনা আসছে, যেটা আপনারা মনে করেনআপনাদের প্রতিনিধি হিসেবে, আপনাদের প্রধান সেবক হিসেবে আমার লালকেল্লা থেকে বলাদরকার, সেটা আমাকে অবশ্যই লিখে পাঠান, মতামত দিন, পরামর্শ দিন, নতুন চিন্তাভাবনানিয়ে আসুন। আমি আপনাদের কথা দেশবাসীর কাছে পৌঁছে দিতে সচেষ্ট হবো। আমি চাইনা যেলালকেল্লার প্রাকার থেকে যেকথা বলা হবে, তা কেবল প্রধানমন্ত্রীর কথাই হবে, উপরন্তুদেশের ১২৫ কোটি জনসাধারণের কথাই বলা হবে। পি.এম.কে.ভি.ওয়াই ৬০ লক্ষ যুবককে নতুন করে প্রশিক্ষণ দেবে আর বাকি ৪০ লক্ষকে আগেকার জ্ঞানের স্বীকৃতি বাবদ (আর.পি.এল)অ-প্রথা-বর্হিভূত শিক্ষা অর্জনের স্বীকৃতি মূলক শংসাপত্র প্রদান করবে। তবে নতুন প্রশিক্ষণ এবং আর.পি.এল বরাদ্দ করার লক্ষমাত্রা পরিবর্তনশীল হতে পারে কার্যকরী এবং পরিচালনগত চাহিদার ভিত্তিতে। শিক্ষার্থীদের আর্থিক সহায়তা হিসেবে ভ্রমণ ভাতা এবং থাকা-খাওয়ার খরচ ইত্যাদি দেওয়া হবে। নিয়োগ পরবর্তী সহায়তা প্রত্যক্ষ সুবিধা হস্তান্তর পদ্ধতিতে প্রাপকদের কাছে সরাসরি পৌঁছে যাবে। অধিকতর স্বচ্ছতা এবং সঠিকভাবে প্রাপকদের বেছে নেওয়ার জন্য প্রশিক্ষণের খরচ আধারের ভিত্তিতে প্রদান করা হবে। কর্মমুখী দক্ষতার প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে শিল্প অনুসারী আদর্শের ভিত্তিতে জাতীয় কর্মমুখী দক্ষতা সংক্রান্ত যোগ্যতা কাঠামোর সঙ্গে সামঞ্জস্য অনুযায়ী। কর্মমুখী দক্ষতার উন্নয়নে গঠিত মুখ্যমন্ত্রীদের উপগোষ্ঠীর সুপারিশের ভিত্তিতে রাজ্য সরকারগুলিকেও পি.এম.কে.ভি.ওয়াই-এর আওতায় প্রকল্প ভিত্তিক দৃষ্টিভঙ্গী অনুযায়ী এই যোজনায় সামিল করা হবে মোট প্রশিক্ষণের ২৫ শতাংশ লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্য নিয়ে। আর এই ২৫ শতাংশ লক্ষ্য অর্জনের জন্য প্রয়োজনীয় আর্থিক সহায়তা বা বরাদ্দ সরাসরি রাজ্যগুলিকে দিয়ে দেওয়া হবে। রোজগার মেলা এবং কৌশল শিবির ইত্যাদির মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের জড়ো করা, তদারকি এবং প্রশিক্ষণ পরবর্তী নিয়োগের ব্যবস্হা করা হবে। শিক্ষার্থীদের নিয়োগের দিকে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হবে এবং এক্ষেত্রে ইনসেনটিভের ব্যবস্হাও থাকবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ভেষজ গাছপালাসম্পর্কে তথ্য, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতার বিনিময়ও এর ফলে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে। চিরাচরিত চিকিৎসাপদ্ধতিক্ষেত্রেভারতের ভূমিকা ও নেতৃত্বদানের বিষয়টিও বিশেষ মর্যাদা লাভ করেছে ইরানে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী লি সিয়েন লুং, মাননীয় উপ-প্রধানমন্ত্রী থরমান সন্মুগরতনম, মাননীয় অন্যান্য মন্ত্রী মহোদয়গণ, সিঙ্গাপুর বক্তৃতার সুযোগ ও সম্মান দেওয়ার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ। গত কয়েক সপ্তাহ ধরে একইসঙ্গে আমরা এগিয়ে চলেছি একই পথে – জি-২০, আসিয়ান এবং পূর্ব এশিয়া বৈঠকের বিভিন্ন অনুষ্ঠান ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে। এ থেকেই প্রমাণিত যে আমাদের ভাগ্যলিপি পরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। ৫০-তম স্বাধীনতা বার্ষিকীতে ভারতের ১২৫ কোটি বন্ধু ও শুভানুধ্যায়ীর পক্ষ থেকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই সিঙ্গাপুরের জনসাধারণকে। মানবজাতি তথা রাষ্ট্রের জীবনে সময় খুব স্বাভাবিকভাবেই ছাপ ফেলে যায়। কিন্তু, সিঙ্গাপুর যেভাবে গর্ব ও সন্তুষ্টির সঙ্গে তাদের ৫০-তম বার্ষিকী পালন করছে পৃথিবীতে তার নজির খুব কমই দেখতে পাওয়া যায়। আধুনিক সিঙ্গাপুরের স্থপতি এবং সমসাময়িককালের এক মহান নেতা লি কুয়ান ইউ-এর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমি আমার বক্তব্য উপস্থাপিত করবো। তাঁর স্বপ্নকে সফল রূপ দিতে, সফল সিঙ্গাপুর গড়ে তুলতে তিনি নিজের জীবন নিয়োজিত করেছেন। এইভাবেই তাঁর সংকল্পের মধ্য দিয়ে তিনি সিঙ্গাপুর’কে পৌঁছে দিয়েছেন সুবর্ণ জয়ন্তী বর্ষে। তাঁর প্রভাব ছিল বিশ্বব্যাপী। দেশে বিদেশে ভারতের সম্ভাবনা ও অবদানে তিনি এতটাই বিশ্বাস করতেন যে, কোনও ভারতবাসীর পক্ষেও তা সম্ভব ছিল না। আমার কাছে তিনি ব্যক্তিগতভাবে এক অনুপ্রেরণা। তাঁর সিঙ্গাপুর ভাষণ থেকে আমি অনেক বিষয়েই শিক্ষালাভ করেছি। আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার বিষয়টি যেমন গুরুত্বপূর্ণ, আপনার শহর ও পারিপার্শ্বিকতাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখাও তেমনই সমানভাবে জরুরি। ভারতে ‘স্বচ্ছ ভারত অভিযান’ আমাদের পরিবেশ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কর্মসূচি মাত্র নয়, বরং আমাদের চিন্তাভাবনা, জীবনযাত্রা এবং কর্মপ্রচেষ্টার এক রূপান্তরের উদ্যোগ। গুণ, দক্ষতা এবং উৎপাদনশীলতা প্রযুক্তিগত উপায়মাত্র নয়, এর সঙ্গে যোগ রয়েছে মানসিকতা ও জীবনশৈলীর। এ বছর মার্চ মাসে আমার সিঙ্গাপুর সফর এবং ভারতে একদিনের শোক পালনের মধ্য দিয়ে আমরা চেয়েছি এক প্রকৃত বন্ধু ও এক বিশেষ সম্পর্ককে সম্মান জানাতে। সিঙ্গাপুর হল এমন একটি দেশ, যা শুধু স্বপ্নই দেখায় না, স্বপ্নকে সত্যিও করে তোলে। সিঙ্গাপুরের কাছ থেকে আমাদের শিখে নেওয়ার অনেক কিছুই রয়েছে। একটি রাষ্ট্রের আয়তন দিয়ে তার সাফল্যের মাত্রা বা উচ্চতাকে বিচার করা যায় না। একইভাবে, সম্পদের অপ্রতুলতা প্রেরণা, কল্পনা ও উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে প্রতিবন্ধকতা হয়ে উঠতে পারে না। কোনও জাতি যখন বৈচিত্র্যকে সাদরে গ্রহণ করে, তখন অনেক কিছুর মধ্যেই ঐক্যসাধনের এক ইচ্ছা তার মধ্যে কাজ করে। মাত্র এক প্রজন্মের মধ্যে একটি জাতিকে সমৃদ্ধির উচ্চতম মাত্রায় পৌঁছে দেওয়া ছাড়াও সিঙ্গাপুরের সাফল্যের ঝুলিতে রয়ছে আরও অনেক কিছু। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে উৎসাহদান ছাড়াও তাকে সংহত করতেও এই দেশটির অবদান কম নয়। সাফল্যের যে মূল চাবিকাঠি – উন্নতমানের মানবসম্পদ, জনসাধারণের আস্থা ও বিশ্বাস এবং একটি জাতির সংকল্পই এই সাফল্য সম্ভব করে তুলেছে। এই দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করেই আমরা ভারতে রূপান্তরের পথ অনুসরণ করছি। সংখ্যার শীতল পরিসংখ্যান দিয়ে নয়, মানুষের মুখে খুশি ও আনন্দের হাসি দিয়েই আমি বিচার করবো আমাদের সাফল্যকে। তাই, আমাদের বেশ কিছু নীতির মূল লক্ষ্য হল – সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়ন। এর সঙ্গেই যুক্ত হয়েছে সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যার পরিবর্তন, পরবর্তী প্রজন্মের উপযোগী পরিকাঠামো, নির্মাণ শিল্পের পুনরুত্থান, উন্নত কৃষি ব্যবস্থা, সহজতর ব্যবসা-বাণিজ্য এবং দক্ষ পরিষেবা ব্যবস্থা গড়ে তোলার প্রচেষ্টা। সময়ের বহু সন্ধিক্ষণেই ঐক্যবদ্ধ হয়েছে ভারত ও সিঙ্গাপুর। ইতিহাসের পাতায়, সাংস্কৃতিক পদচিহ্নে, আত্মীয়তার ঘনিষ্ঠতায় এবং সুপ্রাচীন বাণিজ্যিক যোগাযোগের মধ্য দিয়ে রচিত হয়েছে আমাদের সম্পর্কের ইতিহাস। সিঙ্গাপুরের সাফল্য ভারতীয়দের আশা-আকাঙ্খার স্বপ্ন দেখিয়েছে। বিনিময়ে শান্তি, স্থিতাবস্থা ও ভারসাম্য রক্ষার মধ্য দিয়ে বিশ্ব জগৎ গড়ে তোলার কাজে ভারত প্রজ্জ্বলিত করেছে আশার প্রদীপ। এই লক্ষ্যে এমেরিটাস সিনিয়র মিনিস্টার গো চোক টং-এর কষ্টসাধ্য কৃতিত্ব ও অবদানের মাত্রা অন্য কেউ এখনও স্পর্শ করতে পারেন নি। তিনি পুনর্মিলন ঘটিয়েছেন সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ভারতের এবং এই অঞ্চলের অবশিষ্ট অঞ্চলেরও। এই বিরাট সম্ভাবনার দিকে আমার দৃষ্টিকে জাগিয়ে তুলেছেন তিনিই। বর্তমানকালে সিঙ্গাপুর হল আমাদের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদারদের অন্যতম। এই সম্পর্ক শুধুমাত্র কৌশলগত দিক থেকেই নয়, সুদূরপ্রসারী প্রভাবের দিক থেকেও এই সম্পর্কঅতুলনীয়। আমাদের রয়েছে এক সুনির্দিষ্ট প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্ক। পারস্পরিক স্বার্থ এবং এক সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গীর মধ্য দিয়েই তা রূপ লাভ করেছে। সিঙ্গাপুরের সঙ্গে ভারতের সংযোগ ও যোগাযোগ রয়েছে নিয়মিত। বেঙ্গালুরু’তে প্রথম তথ্য প্রযুক্তি পার্ক গড়ে তোলা থেকে শুরু করে ভারতের নবীন রাজধানী এবং অন্ধ্রপ্রদেশের অমরাবতী সৃষ্টির পেছনে সিঙ্গাপুরের অবদান অনস্বীকার্য। আমাদের অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং বাণিজ্যিক বিনিয়োগের ক্ষেত্র উন্নত হয়ে ওঠার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের এই অংশীদারিত্বের সম্পর্কও উত্তরোত্তর প্রসার লাভ করবে। কিন্তু, আমি সিঙ্গাপুরকে দেখি তার থেকেও বেশি কিছুর এক দেশ হিসেবে। আমাদের এই অঞ্চলের অনেক কাজকর্মই বর্তমান শতকে প্রভাবিত হবে সিঙ্গাপুরের সাফল্যের নিরিখে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং বিশিষ্ট সদস্যবৃন্দ, এশিয়া প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চল জুড়ে সুবিস্তৃত আমাদের এই এলাকা। আমরা এই অঞ্চলের এক নতুন সংজ্ঞা নির্ধারণ করতে চলেছি, যার মধ্যে থাকবে মিলন ইতিহাস এবং পরস্পর সংযুক্ত ভাগ্যলিপি। আমাদের এই অঞ্চল হল – স্বাধীনতা ও সমৃদ্ধির এক প্রসারিত এলাকা। গত শতাব্দীর মধ্যভাগের অন্ধকার থেকে এশিয়াকে আলোয় উত্তরণের পথ দেখিয়েছিল জাপান। এই যাত্রাকে সফল করে তুলতেই হবে। আর এই লক্ষ্যে ভারত ও সিঙ্গাপুর’কে কাজ করে যেতে হবে এক জোট হয়ে। ভারতের ইতিহাস এশিয়ার সাথে এমনই ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে রয়েছে, যা এক কথায় অবিচ্ছেদ্য। অতীতে এমনও সময় গেছে, যখন আমরা অন্তর্মুখী হয়ে পড়েছিলাম। গত ১৮ মাসের সময়কালে আমার সরকার পৃথিবীর অন্য কোনও দেশের তুলনায় এই অঞ্চলের দিকেই ফিরে তাকিয়েছে সবচেয়ে বেশি করে। প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলের বিভিন্ন দেশ, অস্ট্রেলিয়া ও মঙ্গোলিয়া থেকে শুরু করে চিন, জাপান, কোরিয়া এবং আসিয়ান সদস্য রাষ্ট্রগুলির সঙ্গেআমরা নতুন করে আমাদের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যকে ভাগ করে নিতে চেয়েছি। ভারত ও চিন-এর মধ্যে রয়েছে সীমান্ত এবং পাঁচ সহস্রাব্দেরও বেশি নিরন্তর যোগাযোগ। সাধু-সন্ত এবং বাণিজ্যিক প্রতিনিধিরা আমাদের এই সম্পর্ককে লালন করে সমৃদ্ধ করে তুলেছেন পারস্পরের সমাজ ব্যবস্থাকে। চিনের অর্থনৈতিক রূপান্তর আমাদের কাছে এক প্রেরণা-স্বরূপ। ঐ দেশ যেভাবে তার অর্থনীতিতে ভারসাম্য রক্ষা করে চলেছে এবং ভারত যেভাবে নিজের উন্নয়ন প্রচেষ্টায় যুক্ত করেছে গতি তাতে দুটি দেশই পরস্পরের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিতে শক্তি যোগাতে পারে। সেইসঙ্গে, এই অঞ্চলে আমরা এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার রথচক্রকে। একইসঙ্গে, এইভাবে পরস্পরের সঙ্গে হাত মিলিয়ে বাণিজ্য থেকে জলবায়ু পরিবর্তন – সবকটি সাধারণ চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে পারি সাফল্যের সঙ্গে। কৌশলগত যোগাযোগকে আরও জোরদার করে তুলতে এবং আমাদের আলাপ-আলোচনা আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে আমরা সম্মত হয়েছি। সন্ত্রাসবাদের হুমকির মোকাবিলায় আমরা পরস্পরের সঙ্গে যেমন ঐক্যবদ্ধ হয়েছি, অন্যদিকে তেমনই অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা ভাগ করে নেওয়ার উপায় উদ্ভাবনের কাজে আমরা সচেষ্ট থেকেছি। ভারত ও জাপান পরস্পরকে আবিষ্কার করেছে পরবর্তীকালে। কিন্তু, আমার বন্ধুস্থানীয় প্রধানমন্ত্রী আবে কিওটো’র অপূর্ব তীর্থস্থানটিতে আমাদের সুপ্রাচীন আধ্যাত্মিক সম্পর্কের প্রতীকগুলি আমাকে দেখিয়েছিলেন। স্বাধীন ভারত তাঁর সেই উপদেশ মনেপ্রাণে গ্রহণ করেছিল। আমাদের এই দুটি দেশের মধ্যে রয়েছে এমনই কিছু কিছু ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের সম্পর্ক, যার মধ্যে মিশে রয়েছে পারস্পরিক প্রীতি ও শুভেচ্ছা। ভারতে পরিবর্তন তথা রূপান্তরের কর্মযজ্ঞে জাপানের মতো এত বড় ভূমিকা বোধ হয় পৃথিবীর অন্য কোনও রাষ্ট্রই আর গ্রহণ করেনি। বর্তমানে আমরা একসঙ্গে আরও অনেক কাজই করছি। এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতা রক্ষায় আমাদের এই সহযোগিতা কৌশলগত অংশীদারিত্বের এক গুরুত্বপূর্ণ দিক বলেই আমরা মনে করি। সমগ্র অঞ্চলেই অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রসারে রয়েছে ভারতের প্রয়োজনীয় ছক ও কাঠামো। আঞ্চলিক অর্থনীতির সঙ্গে আমরা আরও গভীরভাবে সম্পৃক্ত হতে ইচ্ছুক। আমাদের অংশীদারিত্বের চুক্তির উন্নয়নে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যাতে আঞ্চলিক পর্যায়ে এক সুসংবদ্ধ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তির বিষয়টি দ্রুত সম্পাদন করা যায়। আমাদের এই যুগ ও কালের পরিবর্তনের মুহূর্তে এই অঞ্চলে যা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ তা হল আমাদের সমবেত কর্মপ্রচেষ্টার আদর্শ ও রীতিনীতি স্থির করা। সকলের কল্যাণের স্বার্থে সমুদ্র এলাকাকে সুরক্ষিত, নিরাপদ ও মুক্ত করে তুলতে ভারত তার সর্বশক্তি নিয়োগ করবে। যে চ্যালেঞ্জগুলি এখন আমাদের সামনে রয়েছে তা শুধুমাত্র কোনও দেশের নয়, এই চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী সবকটি দেশই। রাজনৈতিক, আইনি, সামরিক তথা গোয়েন্দা তৎপরতা – সবকটি ক্ষেত্রেই প্রসারিত করতে হবে আমাদের সহযোগিতাকে। প্রয়োজনে হয়তো আমাদের করতে হবে আরও অনেক, অনেক কিছুই। সন্ত্রাসবাদীদের সমর্থন, আশ্রয়, অস্ত্রশস্ত্র এবং অর্থ দিয়ে সাহায্য করলে যে কোনও দেশকেই তার জবাবদিহি করতে হবে। বিশ্বের সমস্ত জাতিকেই একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার মনোভাব নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে প্রত্যেককেই পৌঁছে যেতে হবে অন্যের কাছে। এই অঞ্চলের জন্য, বিশেষত, ছোট ছোট দ্বীপ রাষ্ট্রগুলির স্বার্থে এই কাজ খুবই জরুরি। আমাদের এই অঞ্চলে রয়েছে প্রবল প্রতিশ্রুতি ও সম্ভাবনা। আমরা জানি যে, শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে উত্তরণ আমাদের ঘটবেই। তাই, বর্তমান শতককে এশিয়ার শতকে রূপান্তরিত করার স্বপ্ন আমাদের সফল করে তুলতেই হবে। সুপ্রাচীন সংস্কৃতি ও ধর্মীয় ঐতিহ্যের প্রজ্ঞা রয়েছে আমাদের এশিয়ায়। এখানে রয়েছে যুবশক্তির উদ্যম ও উৎসাহ। বিশ্বশৌচাগার দিবসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নিম্নলিখিত বার্তা দিয়েছেন – “বিশ্বশৌচাগার দিবসে আমাদের দেশের পরিচ্ছন্নতার ব্যবস্থা উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা পুনরায়আমাদের দায়বদ্ধতার কথা মনে করি। ভারতেরবিভিন্ন প্রান্তে যে সব ব্যক্তি এবং সংগঠন আরও বেশি শৌচাগার নির্মাণে কাজ করেযাচ্ছেন, তাদের আমি অভিনন্দন জানাই। দু ’ দেশের মধ্যে সম্পাদিত এই চুক্তিটি তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তির ক্ষেত্রেদু ’ দেশের সহযোগিতা প্রচেষ্টাকে আরও উন্নত করে তুলবে। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকও এর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। এইধরণের ঘটনা বন্ধ করতে প্রয়োজনীয় সকল রকম পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য রাজ্যগুলিকে নির্দেশদেওয়া হয়েছে মন্ত্রকের পক্ষ থেকে। সাংহাই সহযোগিতা সংগঠন (এসসিও)-এর শীর্ষ বৈঠকের পাশাপাশি বৃহস্পতিবার চিনের প্রেসিডেন্ট মিঃ জি জিনপিং-এর সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এসসিও-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তিকে স্বাগত জানিয়ে মিঃ জিনপিং বলেন যে এর ফলে এই সংগঠনটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবে। এসসিও-তে ভারতের সদস্যপদকে সমর্থন জানানোর জন্য চিনের প্রেসিডেন্টকে বিশেষ ধন্যবাদ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। সোল-এ পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর (এনএসজি) যে বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে, সেখানে এনএসজি-তে ভারতের সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি আলোচিত হবে একথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী সদস্যপদে ভারতের আবেদনকে ন্যায় ও যুক্তির সঙ্গে যাতে চিন বিবেচনা করেসেজন্য অনুরোধ জানান মিঃ জিনপিং-কে। সদস্যপদে ভারতের এই আবেদন ন্যয়সঙ্গত বলে দাবি করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে ব্রিক্‌সসদস্য দেশগুলির মধ্যে অর্থনৈতিক ও বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার হয়ে উঠবে। মউস্বাক্ষরের জন্য সরকারের তরফে অবশ্য কোনরকম আর্থিক বাধ্যবাধকতা থাকছে না। ব্রিক্‌সদেশগুলির অংশগ্রহণকারী বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান এই মউ স্বাক্ষরের ফলেবিশেষভাবে উপকৃত হবে। এই দুঃখের মুহূর্তে বাংলাদেশের ভাই-বোনদের সঙ্গেই রয়েছে ভারত। শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির সমব্যথী আমিও। বুধবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত, ব্রাজিল এবং দক্ষিণ আফ্রিকা (আইবিএসএ)-র মধ্যে দারিদ্রও ক্ষুধা দূরীকরণের জন্য আইবিএসএ তহবিল গঠনে ত্রিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া হয়| ভারত ছাড়োআন্দোলনের ৭৫তম বার্ষিকী উপলক্ষে আজ লোকসভায় এক বিশেষ বক্তব্য পেশ করেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ১৮৫৭ খ্রিষ্টাব্দের পরথেকে যে সমস্ত নেতাদের দেশ অনুসরণ করেছিল, তাঁদের স্মৃতিচারণার পাশাপাশি সেইসময়কার বিভিন্ন আন্দোলনের কথাও প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন তাঁর এদিনের বক্তব্যে।তিনি বলেন, ভারত ছাড়ো আন্দোলনের সূচনা ১৯৪২ সালে। নিঃসন্দেহে এটি ছিল এক সফলআন্দোলন। ‘করেঙ্গে ইয়া মরেঙ্গে’ মহাত্মা গান্ধীর এই বলিষ্ঠ আহ্বানে সাড়া দিয়ে সমাজেরসর্বস্তরের মানুষ ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন এই আন্দোলনে। রাজনৈতিক নেতা থেকে সাধারণ মানুষ –প্রত্যেকের মধ্যেই সঞ্চারিত হয়েছিল এক নতুন শক্তি। বিশিষ্টলেখক রামবৃক্ষ বেণীপুরী এবং কবি সোহনলাল দ্বিবেদীকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী সেইসময়কার সাধারণ আবেগকে ভাষায় মূর্ত করেন তাঁর আজকের ভাষণে। তিনি বলেন,ভারতের এখন প্রয়োজন দুর্নীতি, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা এবং অপুষ্টির মতোচ্যালেঞ্জগুলি অতিক্রম করা। এজন্য জরুরি এক ইতিবাচক রূপান্তর প্রচেষ্টা এবং অভিন্নএক সঙ্কল্পের। ১৯৪২ সালের বিশ্ব পরিস্থিতি যে ভারতের স্বাধীনতা লাভের এক অনুকূল পটভূমিগড়ে তুলেছিল, একথার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বের বর্তমান পরিস্থিতিওকিন্তু রয়েছে ভারতেরই অনুকূলে। ১৮৫৭ থেকে ১৯৪২ – এই সময়কালের আন্দোলন ছিল ক্রমপর্যায়ের।কিন্তু ১৯৪২ থেকে ১৯৪৭-এর আন্দোলনের প্রকৃতি ছিল রূপান্তরমুখী, যার ফলে আমাদেরনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য পূরণ সম্ভব হয়ে ওঠে। কিন্তু আজকের দিনে এই ডাক হওয়া উচিৎ ‘করেঙ্গে অউর করকে রহেঙ্গে’।সেইসঙ্গে, আগামী পাঁচ বছরে ‘সঙ্কল্প থেকে সিদ্ধি’তে উত্তরণের জন্য আমাদের শপথগ্রহণ করতে হবে। মঞ্চে উপস্থিত বিশিষ্টজন এবং এই মনোরম মাঠে সমবেত বন্ধুরা, চতুর্থ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে বিশ্বের সকল প্রান্তের যোগ-প্রেমীদের উত্তরাখন্ডের এই পবিত্র দেবভূমি থেকে আমি আমার শুভেচ্ছা জানাই। এছাড়াও, কয়েক দশক ধরে যোগচর্চা তথা যোগাভ্যাসের একটি মূল কেন্দ্র হ’ল উত্তরাখন্ড। উত্তরাখন্ডের এই পর্বতমালা যোগাভ্যাস ও আয়ুর্বেদচর্চায় আমাদের স্বতঃপ্রণোদিত করে। এমনকি, একজন সাধারণ মানুষও এই স্থান পরিদর্শনকালে এক বিরল অভিজ্ঞতা লাভ করে। এই পবিত্র ভূমির রয়েছে এক অবিশ্বাস্য ক্ষমতা, যা তার চৌম্বকশক্তির সাহায্যে আমাদের মধ্যে আলোড়ন ঘটায়। সকল ভারতীয়র পক্ষে খুবই গর্বের বিষয় হ’ল এই যে সূর্য পরিক্রমণের সঙ্গে সঙ্গে সূর্যরশ্মি যেমন ভূ-পৃষ্ঠকে আলোকিত করে তোলে, তেমনভাবেই বিশ্বের অন্য প্রান্তের মানুষও তাঁদের যোগচর্চার মাধ্যমে সূর্যকে স্বাগত জানান। দেরাদুন থেকে ডাবলিন, সাংহাই থেকে শিকাগো, জাকার্তা থেকে জোহানেসবার্গ সর্বত্রই চলছে যোগাভ্যাস ও যোগচর্চা। হাজার হাজার উচ্চতার হিমালয় পর্বতশৃঙ্গই হোক কিংবা প্রখর সূর্যরশ্মির মরু অঞ্চল, সর্বত্রই যে কোনও পরিস্থিতিতেই যোগচর্চার অভ্যাস বর্তমানে ক্রমপ্রসারমান। কিন্তু এই দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও উত্তেজনার মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখতে সাহায্য করে যোগাভ্যাস। তা আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে। দেহ, মন, আত্মা ও শক্তির মধ্যে যোগস্থাপন করে আমাদের এই আধুনিক ব্যস্ত জীবনে শান্তি নিয়ে আসে যোগাভ্যাস। পরিবারের সদস্যদের মধ্যে ঐক্যের প্রসার ঘটিয়ে পারিবারিক শান্তি অক্ষুণ্ন রাখতে সাহায্য করে যোগচর্চা। পরিবারকে সমাজ সম্পর্কে সংবেদনশীল করে তোলার মাধ্যমে যোগ সম্প্রীতির প্রসার ঘটায় আমাদের সমাজ জীবনেও। বিভিন্ন ধরণের সমাজের সহাবস্থান হ’ল জাতীয় সংহতির এক বিশেষ যোগসূত্র। এইভাবেই যদি দেশকে গড়ে তোলা যায়, তা হলে বিশ্ব শান্তি ও সম্প্রীতিরও প্রসার ঘটে। মানবতার বিকাশের মধ্য দিয়ে সৌভ্রাতৃত্ববোধ তাতে শক্তি যোগায়। আবার রাষ্ট্রসংঘের ইতিহাসে এটাই হ’ল প্রথম প্রস্তাব, যা খুব অল্প সময়ের মধ্যেই অনুমোদনলাভ করে। আমাদের এই উত্তরাধিকারের প্রশ্নে যদি আমরা গর্ব অনুভব করি এবং সময়ের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়, এমন অভ্যাসগুলি যদি আমরা ত্যাগ করি তা হলে অপ্রচলিত রীতিনীতিকে আমরা বর্জন করতে পারি। কিন্তু নিজেদের শক্তি ও ক্ষমতার ওপর যদি আমাদের কোনও রকম আস্থা না থাকে, তা হলে বাইরের কোনও মানুষই তাকে গ্রহণ করতে এগিয়ে আসবে না। কোনও পরিবারে একটি শিশুকে যদি নীতিভ্রষ্ট হতে মদত দেওয়া হয়, তা হলে সেই পরিবার কখনই আশা করতে পারে না যে তাঁদের সন্তান একদিন অন্যের কাছ থেকে সম্মান ও সমীহ অর্জন করবে। পিতামাতা, ভাইবোন এবং সমগ্র পরিবার যখন তাঁদের সন্তানকে সন্তানের মতোই প্রতিপালন করবে তখন পাড়া-প্রতিবেশীরাও তাকে আপন করে নিতে আগ্রহী হয়ে উঠবে। বর্তমান বিশ্বে যোগই হ’ল ঐক্য সৃষ্টিকারী ক্ষমতাগুলির অন্যতম। সম্পূর্ণ আস্থা ও বিশ্বাসের সঙ্গেই আমি আজ বলতে পারি যে, সমগ্র বিশ্বের মানুষকে যদি যোগচর্চার সূত্রে আমরা মিলিত করতে পারি, তা হলে অনেক অকল্পনীয় সত্যই প্রকাশিত হবে বিশ্ববাসীর কাছে। বিভিন্ন দেশের পার্ক ও উদ্যানে, উন্মুক্ত প্রান্তরে, পথপ্রান্তে, অফিস ও বাড়িতে, স্কুল-কলেজ ও হাসপাতালে এবং ঐতিহাসিক ভবনগুলিতে আপনাদের মতোই আর সকলেই যখন সমবেত হয়েছেন, তখন বিশ্বজনীন ভ্রাতৃত্ববোধ এবং বিশ্বমৈত্রীর প্রসার ঘটানোর মতো শক্তির আমরা সঞ্জীবন ঘটাই। যোগ দিবস হ’ল প্রকৃতপক্ষে এক বৃহত্তম জনআন্দোলন, যার লক্ষ্যই হ’ল সুস্বাস্থ্য। বন্ধুগণ, টোকিও থেকে টরেন্টো, স্টকহোম থেকে সাওপাওলো সর্বত্রই কোটি কোটি মানুষের জীবনকে ইতিবাচকভাবে প্রভাবিত করেছে যোগাভ্যাস। যোগ হ’ল একাধারে সুপ্রাচীন অথচ আধুনিক একটি চর্চা-বিশেষ এবং প্রতিনিয়তই তা আরও বিকশিত হচ্ছে। যোগচর্চার মধ্যে ব্যক্তি-কেন্দ্রিক বা সামাজিক অনেক রকম সমস্যারই আমরা প্রকৃত সমাধান খুঁজে পাই। আমাদের বিশ্ব সংসার সতত জাগরূক। বিশ্বের কোনও না কোনও প্রান্তে সকল সময়েই ঘটে চলেছে নতুন কোনও ঘটনা। আমাদের জীবন যেহেতু দ্রুত গতিশীল, সেই কারণে তার মধ্যে উত্তেজনা ও সংঘাতেরও অবকাশ থেকে যায়। শুধুমাত্র হৃদযন্ত্রের বিকলতায় প্রতি বছর বিশ্বের প্রায় ১ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষ মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ে, তা জেনে আমি মর্মাহত। আবার প্রচুর সংখ্যক মানুষ শর্করা রোগের সঙ্গে নিয়ত যুদ্ধ করতে করতে পরাভাব শিকার করতে বাধ্য হন। এক শান্ত, সৃজনশীল কর্মজীবনের দ্যোতকই হ’ল যোগ। উত্তেজনা ও অশান্তিকে জয় করার শক্তি রয়েছে যোগের। তাই, যোগ আমাদের বিচ্ছিন্ন করে না, বরং ঐক্যবদ্ধ করে। বৈরিতা নয়, বরং মিলন ও সম্প্রীতি ঘটায় যোগ। মানুষের রোগব্যাধির উপশম ও নির্মূল ঘটাতে সাহায্য করে যোগাভ্যাস। আর এইভাবেই যোগচর্চা সুখ, শান্তি ও সৌভ্রাতৃত্বের জগতকে সাদর আহ্বান জানায়। এই কারণে, আগামী দিনে এর ওপর ভিত্তি করে এগিয়ে চলার জন্য আমি আপনাদের সকলের কাছে আহ্বান জানাই। আজকের দিনটি পালনের বিশেষ তাৎপর্যই হ’ল তাই। বন্ধুগণ, রোগ-জরার পথ থেকে সুস্থতার পথে মানুষকে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করে যোগাভ্যাস। ঠিক এই কারণেই বিশ্বের সর্বত্র যোগের কদর দিন দিন বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। কভেন্ট্রি বিশ্ববিদ্যালয় এবং র‍্যাডবাউড বিশ্ববিদ্যালয় পরিচালিত সমীক্ষায় প্রকাশ যে, যোগ শুধুমাত্র আমাদের দেহেরই রোগ মুক্তি ঘটায় না, সেই সঙ্গে আমাদের ডিএনএ-তে রোগ সৃষ্টিকারী যে প্রতিক্রিয়া ঘটে চলে, তাকেও বিপরীতমুখী করে তোলে। সুস্বাস্থ্য ছাড়াও বেশ কিছু রোগব্যাধি থেকে আমরা আমাদের রক্ষা করতে পারি যদি আমরা যোগের মাধ্যমে শ্বাস-প্রশ্বাসের ব্যায়াম অভ্যাস করতে পারি। নিয়মিত যোগাভ্যাস যে কোনও পরিবারেরই চিকিৎসার খরচ উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনতে সাহায্য করে। বন্ধুগণ, যোগচর্চার ক্রমপ্রসার ভারত ও বিশ্বকে পরস্পরের আরও কাছে নিয়ে আসতে সাহায্য করেছে। আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টার ফলে যোগচর্চার ক্ষেত্রে যে পরিবেশ ও পরিস্থিতির আজ সৃষ্টি হয়েছে কালক্রমে তা আরও জোরদার হয়ে উঠবে। মানব জীবনকে সুখী ও নীরোগ করে তুলতে যোগের ভূমিকা যে অনস্বীকার্য এই বোধকে আরও বেশি মাত্রায় জাগিয়ে তোলার দায়িত্ব হ’ল আমাদেরই। এই ধরণের একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করার জন্য আমি আন্তরিকভাবেই শ্রদ্ধাশীল উত্তরাখন্ড সরকারের প্রতি। আপনাদের সকলকেই জানাই অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সিঙ্গাপুরের প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান শ্রী এস আর নাথানের প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন। একবার্তায় তিনি বলেছেন, “সিঙ্গাপুরের প্রাক্তন রাষ্ট্রপ্রধান শ্রী এস আর নাথানেরজীবনাবসানে বিষণ্ন বোধ করছি। সিঙ্গাপুর এমন এক বিশিষ্ট নেতাকে হারাল যিনি প্রায়সর্বত্র প্রশংসিত ছিলেন। রাষ্ট্রপতিনাথানের প্রয়াণে গভীর শোক পালনে আমরা ভারতের সকলে সিঙ্গাপুরবাসীর সঙ্গে যোগদিচ্ছি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দাতো শ্রী মহম্মদ নাজিব, মাননীয় অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, এই সুন্দর কুয়ালালামপুর শহরে শীর্ষ বৈঠকের অপূর্ব ব্যবস্থাপনার জন্য প্রধানমন্ত্রী নাজিব এবং মালয়েশিয়ার জনসাধারণকে আমি বিশেষভাবে প্রশংসা জানাই। পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠক পর্যালোচনার এই চমৎকার আয়োজনের জন্য আমি আপনাদের জানাই অভিনন্দন। এই শীর্ষ বৈঠকটি প্রকৃত অর্থেই ঐতিহাসিক। আসিয়ান গোষ্ঠী গড়ে তোলার লক্ষ্যে গৃহীত দৃষ্টিভঙ্গী এবং ২০২৫ সাল পর্যন্ত লক্ষ্য ও পন্থাপদ্ধতি উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধির জন্য আসিয়ানের সদস্যদের আমি সাধুবাদ জানাই। আঞ্চলিক স্তরে সংহতি ও সমঝোতার বাতাবরণকে আরও প্রসারিত করার লক্ষ্যে আসিয়ান এক অগ্রণী ও কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করে যাবে বলে আমরা আশাবাদী। এই মঞ্চে সন্ত্রাসবাদকে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের একটি মূল সমস্যা বলে আমরা চিহ্নিত করে থাকি। প্যারিসে জলবায়ু পরিবর্তনের ওপর আর মাত্র কিছুদিনের মধ্যেই এক শীর্ষ বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। সেই মঞ্চে শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় একটি সুনির্দিষ্ট ভারসাম্য রক্ষার পথ খুঁজে নেওয়ার মধ্যেই আমরা সীমাবদ্ধ থাকব না। একইসঙ্গে, সন্ত্রাসের ভয়ে কোন অবস্থাতেই পিছিয়ে যাব না এই সুস্পষ্ট বার্তাও আমরা পৌঁছে দেব সকলে ঐক্যবদ্ধ থেকে। ১৮ মাস আগে আমার সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগর অঞ্চলে যে ধরনের কর্মব্যস্ততা বৃদ্ধি পেয়েছে, পৃথিবীর অন্য কোন অঞ্চলে তার নজির মেলা ভার। এই ঘটনা থেকে প্রমাণিত হয় যে এই অঞ্চলের গুরুত্ব ভারত তথা বিশ্বের পক্ষে যে সমানভাবে প্রযোজ্য সে সম্পর্কে আমাদের দেশে গড়ে উঠেছে এক অভিন্ন সহমত। বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও অনিশ্চয়তার মোকাবিলায় সমগ্র বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে এই অঞ্চলটির দিকে। এর মধ্যেই এক স্থিতিশীল, সমৃদ্ধ ও শান্তিপূর্ণ পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে এক পরিবর্তন তথা রূপান্তরের পথে এগিয়ে চলেছে আমাদের এই অঞ্চলটি। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পূর্ব এশিয়ার শীর্ষ বৈঠক হল একটি মূল মঞ্চ। প্রথমত, নিরাপত্তা ও সহযোগিতার লক্ষ্যে ভারসাম্যের ভিত্তিতে এবং অন্তর্ভুক্তির মধ্য দিয়ে এক স্বচ্ছ ও উদার আঞ্চলিক পরিস্থিতি গড়ে তোলার উপায় উদ্ভাবনের জন্য পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠককে কাজ করে যেতে হবে। আন্তর্জাতিক রীতিনীতি ও নিয়মকানুনকে সম্মান জানিয়ে এবং তা আরও শক্তিশালী করে তুলতে আমাদের সমবেত অঙ্গীকারকে সুদৃঢ় করে তুলতে হবে। দ্বিতীয়ত, সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তা গড়ে তোলার জন্য মহাসাগরগুলির গুরুত্ব অপরিসীম। ভূখণ্ড বা সীমানা সম্পর্কিত যেকোন ধরনের বিবাদের নিষ্পত্তি প্রয়োজন শান্তিপূর্ণ পথ ও উপায়েই। সম্প্রতি ভারত ও বাংলাদেশ ‘UNCLOS’ –এর সাহায্যে তাদের নৌ-সীমানার বিষয়টি নিষ্পত্তি করেছে। সহমতের ভিত্তিতে সব পক্ষই এক আচরণবিধি মেনে চলতে আরও দ্বিগুণ উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আমার বিশ্বাস। তৃতীয়ত, সাইবার নিরাপত্তা প্রশ্নেও ঘনিষ্ঠতর সহযোগিতার লক্ষ্যে আমাদের প্রয়োজন দৃঢ় অঙ্গীকার গ্রহণের। সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে কতকগুলি নিয়মনীতি গড়ে তোলার জন্য আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। মনে রাখতে হবে, মহাকাশ সম্পর্কেও আমাদের উদ্বেগ-আশঙ্কা কম নয়। কোনরকম ফাঁকফোকর বা ত্রুটি-বিচ্যুতি যাতে না থাকে তা নিশ্চিত করতে জোরদার করে তুলতে হবে আমাদের সহযোগিতা। আসিয়ান দেশগুলির সঙ্গে ভূখণ্ড ও নৌ-সীমানার সম্পর্ক রয়েছে ভারতের। আসিয়ান এবং পূর্ব ও দক্ষিণের অংশীদারদের মধ্যে পারস্পরিক নিরাপত্তা আরও জোরদার করে তুলতে ভারত তার প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবে। আসিয়ান দেশগুলির নেতৃত্বে নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা ও সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারত অংশগ্রহণ করবে সক্রিয়ভাবেই। চতুর্থত, আঞ্চলিক স্তরে দ্রুত এক সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমাদের কাজ করে যেতে হবে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল বরাবর সহযোগিতা গড়ে তোলাও আরেকটি উল্লেখযোগ্য বিষয়। আমি আশা করি প্রতিযোগিতা নয়, বরং এক সংহত অর্থনৈতিক সহযোগিতার ভিত্তিতে গড়ে ওঠা সম্পর্ক আমরা সম্ভব করে তুলতে পারব এই অঞ্চলে। পরিশেষে, পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠকের মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে উন্নয়ন সংক্রান্ত সহযোগিতা। সহযোগী দেশগুলির কর্মপ্রচেষ্টাকে ভারত নিরন্তর সমর্থন যুগিয়ে যাবে। দক্ষিণ ও পূর্বের মধ্যে জ্ঞানের আদান-প্রদান সম্পর্কিত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে বিপর্যয় মোকাবিলা, নার্সিং ও ট্রমার চিকিৎসা ও যত্ন গ্রহণের ক্ষেত্রে। বিশ্বমানের শিক্ষা ও জ্ঞানের এক পীঠস্থান হিসেবে গড়ে উঠছে নালন্দা বিশ্ববিদ্যালয়। বর্হিমহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারে ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যেসমঝোতায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভাঅনুমোদন দিয়েছে। শিক্ষা, কৃষি, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, টেলিযোগাযোগ, গ্রামীণ স্বাস্হ্য,নিকাশি বাবস্হা, নগরোন্নয়ন, রিমোট সেন্সিং এবং পারস্পরিক সম্মতির পরিপ্রেক্ষিতেঅন্য যেকোন ক্ষেত্রে মহাকাশ প্রযুক্তির ব্যবহার সংক্রান্ত সহযোগিতাই এইসমঝোতাপত্রের মূল প্রতিপাদ্য। দুটি দেশই এই সমঝোতার ফলে নিম্নলিখিতভাবে উপকৃত হবে : যেপ্রকল্পগুলির কাজ আজ ‘প্রগতি’র বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয় তার মধ্যে রয়েছে –দিল্লি-মুম্বাই শিল্প করিডর এবং অন্ধ্রপ্রদেশের মংলাগিরি, পশ্চিমবঙ্গের কল্যাণী,মহারাষ্ট্রের নাগপুর এবং উত্তরপ্রদেশের গোরক্ষপুরে এইম্‌স গড়ে তোলার কাজকর্ম। ‘স্মার্টনগরী’ প্রকল্পের অগ্রগতিও আজ খতিয়ে দেখেন প্রধানমন্ত্রী। এই কাজের চ্যালেঞ্জসংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি যেভাবে গ্রহণ করেছে তার ভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। অরণ্যেরঅধিকার আইন পর্যালোচনাকালে মহাকাশ প্রযুক্তি ব্যবহারের ওপর জোর দেন শ্রী মোদী।তিনি বলেন, আদিবাসী সম্প্রদায়গুলির অধিকার নিশ্চিত করা এবং তাঁদের দাবি-দাওয়াগুলিরদ্রুত নিষ্পত্তিতে মহাকাশ প্রযুক্তির সাহায্য গ্রহণ করা একান্ত জরুরি। এই উপলক্ষে প্রদত্ত এক ভাষণে জাতির প্রগতি ও অগ্রগতির লক্ষ্যে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেছেন, উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির উচিত পঠনপাঠনের ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের বিষয়টিকে অগ্রাধিকার দেওয়া। তিনি বলেন, বিশ্ব উষ্ণায়নের মতো সমস্যার সমাধান খোঁজা এবং বর্জ্য থেকে সম্পদ উৎপাদনের মধ্যেই লুকিয়ে রয়েছে ভারতের উন্নতির মূল চাবিকাঠি। প্রতিরক্ষা উৎপাদনের ক্ষেত্রে দৃষ্টি দিতে তিনি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে আর্জি জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকেআজ সশস্ত্র সীমা বল-এর ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় গ্রুপ ‘এ’ পরিষেবা ও ঐ বাহিনীর গ্রুপ‘এ’ এক্সিকিউটিভ আধিকারিকদের ক্যাডার রিভিউয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। এরফলে, অ্যাসিস্ট্যান্ট কমান্ডান্ট থেকে ইন্সপেক্টর জেনারেল পর্যন্ত নানা পদমর্যাদার১৯টি পদ সৃষ্টির দ্বারা সশস্ত্র সীমা বল-এর পরিচালনা ও প্রশাসনিক সামর্থ্যবৃদ্ধিরও ব্যবস্থা হয়েছে। বাহিনীতে গ্রুপ ‘এ’ পদের বর্তমান সংখ্যা১,২৫৩ থেকে বেড়ে ১,২৭২-এ পৌঁছবে নিম্নলিখিতভাবে : 1. ইন্সপেক্টর জেনারেলের ২টি পদ বৃদ্ধি; 2. ডিআইজি/কমান্ডান্ট পর্যায়ে ১১টি পদের নিটবৃদ্ধি; 3. ডিসি পর্যায়ের ২টি পদের বৃদ্ধি; 4. এসি পর্যায়ের ৪টি পদের বৃদ্ধি। এটি ২০০১ সালে স্বরাষ্ট্র দপ্তরের আওতায় আসার পর সশস্ত্র সীমাবল-কে ভারত-নেপাল ও ভারত-ভুটান সীমান্ত রক্ষার দায়িত্ব দেওয়া হয়। এছাড়া, বামপন্থীউগ্রপন্থা অধ্যুষিত অঞ্চলে উগ্রপন্থা প্রতিরোধে/অভিযানগত দায়িত্ব পালনেওজম্মু-কাশ্মীর ও অসমে একে কাজে লাগানো হয়। অন্ধ্রপ্রদেশেররাজ্যপাল শ্রী ই এস এল নরসিংহম, অন্ধ্রপ্রদেশেরমুখ্যমন্ত্রী শ্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু, বিজ্ঞানও প্রযুক্তি এবং ভূ-বিজ্ঞান দপ্তরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ডঃ হর্ষ বর্ধন, কেন্দ্রীয়বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং ভূ-বিজ্ঞান প্রতিমন্ত্রী শ্রী ওয়াই এস চৌধুরি, ভারতীয়বিজ্ঞান কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সভাপতি অধ্যাপক ডি নারায়ণ রাও, শ্রীভেঙ্কটেশ্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক এ দামোদরম, পবিত্রতিরুপতি শহরে দেশ-বিদেশের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের সঙ্গে নিয়ে নতুন বছরটি শুরু করতে পেরেআমি আনন্দিত। শ্রীভেঙ্কটেশ্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের এই নান্দনিক পরিবেশে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৪তমঅধিবেশনের উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়েও আমি বিশেষভাবে খুশি। এবছরের অধিবেশনের বিষয়বস্তু হিসেবে ‘জাতীয় উন্নয়নের স্বার্থে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি’-কেবেছে নেওয়ার জন্য ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেস অ্যাসোসিয়েশন কর্তৃপক্ষকে আমি সাধুবাদজানাই। শ্রম,চিন্তাভাবনা ও নেতৃত্বদানের মাধ্যমে সমাজের ক্ষমতায়নে বিজ্ঞানীরা যেভাবে নিরলসপরিশ্রম করে চলেছেন সেজন্য সমগ্র জাতি তাঁদের কাছে কৃতজ্ঞ। ২০১৬-রনভেম্বরে ডঃ এম জি কে মেননের মতো এরকমই একজন বিশিষ্ট বিজ্ঞানী ও প্রতিষ্ঠাতাকে দেশহারিয়েছে। সকলের সঙ্গে মিলিতভাবে আমি শ্রদ্ধা জানাই তাঁর উদ্দেশে। যেগতি ও মাত্রার এক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে আমরা বর্তমানে চলেছি তা এক কথায় নজিরবিহীন। যেসমস্ত চ্যালেঞ্জ একদিন হঠাৎ এসে উপস্থিত হবে সেগুলির মোকাবিলায় আমরা কিভাবেনিজেদের প্রস্তুত করব এটি একটি বিরাট প্রশ্ন। কিন্তু কৌতুহল ও অনুসন্ধিৎসা-চালিতদৃঢ়মূল এক বৈজ্ঞানিক ঐতিহ্য নতুন বাস্তবতার সঙ্গে নিজেদের মানিয়ে নিতে আমাদেরসাহায্য করেছে। জনশক্তিএবং পরিকাঠামো ক্ষেত্রে যে বিনিয়োগ আজ আমরা করে চলেছি তারই হাত ধরে আগামীদিনে এসেউপস্থিত হবেন বিশেষজ্ঞরা। এইসমস্ত গুরুত্বপূর্ণ চ্যালেঞ্জগুলির মধ্যে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জ রয়েছে জল ও জ্বালানিশক্তি, খাদ্য ও স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পরিবেশ ও জলবায়ু এবং নিরাপত্তা ক্ষেত্রে। যেসমস্ত প্রযুক্তি ব্যাঘাত ও বিচ্ছিন্নতাকে প্রশ্রয় দেয়, তার ওপর সতর্ক দৃষ্টি রেখেসেগুলিকে বিকাশের কাজের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে আমাদের। প্রযুক্তি প্রস্তুতি এবংপ্রতিযোগিতামুখিনতার যে চ্যালেঞ্জ ও সুযোগগুলি রয়েছে সেগুলি খুব সুস্পষ্টভাবেঅনুভব ও উপলব্ধি করতে হবে আমাদের। আমিশুনেছি যে গত বছরের বিজ্ঞান কংগ্রেসে ‘প্রযুক্তি ভাবনা, ২০৩৫’-এর যে দলিলটি প্রকাশকরা হয় তা এখন ১২টি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিক্ষেত্রে একটি বিস্তারিত রূপরেখার আকারধারণ করতে চলেছে। এছাড়াও, দেশের জন্য এক সার্বিক বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভাবনা গড়েতোলার কাজে ব্যস্ত রয়েছে নিতি আয়োগ। সাইবারক্ষেত্রের ব্যবহার সম্পর্কিত বিষয়টি যেভাবে বিশ্বে ক্রমবিস্তৃতি লাভ করেছে, তারমোকাবিলা করাও আমাদের গুরুত্বপূর্ণ কাজের মধ্যে পড়ে। এক নজিরবিহীন চ্যালেঞ্জ এবংজনগোষ্ঠীর ওপর তার প্রভাব পড়ার আশঙ্কা রয়েছে যথেষ্ট। কিন্তু গবেষণা, প্রশিক্ষণ,রোবোটিক্স-এ দক্ষতা, গোয়েন্দা তথ্য, ডিজিটাল ব্যবস্থা, তথ্য ও পরিসংখ্যানবিশ্লেষণ, গভীর জ্ঞান ও শিক্ষা, উন্নত যোগাযোগ এবং ইন্টারনেটের সুযোগের সাহায্যেএই সমস্ত চ্যালেঞ্জকে আমরা এক বিরাট সুযোগে রূপান্তরিত করতে পারি। পরিষেবাও উৎপাদন ক্ষেত্র; জল, কৃষি ও জ্বালানি শক্তি, যান চলাচল ব্যবস্থাপনা; স্বাস্থ্য,পরিবেশ, পরিকাঠামো এবং ভূতাত্ত্বিক তথ্য ব্যবস্থা; নিরাপত্তা, আর্থিক ব্যবস্থা এবংঅপরাধ দমন – এই সবক’টি ক্ষেত্রে প্রযুক্তির উদ্ভাবন, বিকাশ ও প্রয়োগের প্রয়োজনীয়তাএকান্ত জরুরি। ভারতীয়ভূখণ্ডের চারপাশে যে মহাসাগরীয় পরিমণ্ডল রয়েছে তাতে অবস্থিত ১,৩০০-রও বেশিদ্বীপভূমি। আরতা থেকে আমরা লাভ করেছি খাদ্য, ওষুধ, জ্বালানি শক্তি এবং আরও নানা প্রাকৃতিকসহায়সম্পদের সুযোগ ও প্রাচুর্য। আমাদের ভবিষ্যতকে অটুট ও সুরক্ষিত রাখার কাজেসমুদ্র-নির্ভর অর্থনীতি এক বিশেষ মাত্রা যোগ করতে পারে। এইসমস্ত সহায়সম্পদকে দায়িত্বের সঙ্গে কাজে লাগাতে কেন্দ্রীয় ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক একগভীর মহাসাগরীয় মিশনের সূচনা করতে চলেছে যাত কাজ হবে এই সমস্ত সম্পদের অন্বেষণ ওপ্রয়োগ সম্পর্কে উপায় উদ্ভাবন। জাতির সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার লক্ষ্যে এই কাজ হয়েউঠবে এক রূপান্তরমুখী পদক্ষেপ। আন্তর্জাতিকক্ষেত্রের মানের সঙ্গে সঙ্গতি রেখে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংক্রান্ত আমাদের শ্রেষ্ঠপ্রতিষ্ঠানগুলির উচিৎ তাদের মূল গবেষণাকে আরও জোরদার করে তোলা। মূল ও প্রাথমিকজ্ঞানকে উদ্ভাবন, স্টার্ট আপ ও শিল্পের কাজে ব্যবহার করতে হবে যাতেঅন্তর্ভুক্তিমূলক এক নিরন্তর বিকাশের মধ্য দিয়ে আমরা যাত্রা করতে পারি। প্রাথমিক গবেষণা, প্রযুক্তিতে তা রূপান্তর এবং সামাজিক যোগ স্থাপনেরচ্যালেঞ্জগুলি ভারতের বিজ্ঞানীরা যে সাফল্যের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারবেন সে বিষয়েআমি নিশ্চিত। বিকাশের যে যাত্রাপথে আমরা গতিসঞ্চার করেছি, তা যে স্থির লক্ষ্যে উপনীত হবে এ বিষয়ে সন্দেহের কোন অবকাশ নেই। দেশের জনসাধারণের ক্রমবর্ধমানআশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে বিজ্ঞানকে অবশ্যই কাজে লাগাতে হবে। সামাজিক চাহিদা মেটানোরকাজে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যে এক বিশেষ শক্তিশালী ভূমিকা পালন করে তা আমরা, অর্থাৎভারতবাসীরা নির্দ্বিধায় স্বীকার করতে পারি। গ্রাম ও শহরের মধ্যে যে বিভেদগত সমস্যারয়েছে, তা মিটিয়ে ফেলে অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশ, অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবংকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির কাজে আমাদের চেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। এজন্য প্রয়োজনএমন এক নতুন ও উন্নত কাঠামোগত ব্যবস্থা যা সংশ্লিষ্ট সবক’টি ক্ষেত্রকে পরস্পরেরসঙ্গে যুক্ত ও সম্পৃক্ত করতে পারবে। এই কাজে ব্রতী হতে হবে দেশেরমন্ত্রী, বিজ্ঞানী, গবেষণা ও উন্নয়ন প্রতিষ্ঠান, শিল্প, স্টার্ট আপ সংস্থা,বিশ্ববিদ্যালয় এবং আইআইটি-গুলিকে। বিশেষ করে, আমাদের পরিকাঠামো ও আর্থ-সামাজিকমন্ত্রকগুলিকে উদ্যোগ নিতে হবে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিকে যথোপযুক্তভাবে কাজে লাগানোরলক্ষ্যে। দীর্ঘমেয়াদি গবেষণার কাজে অনাবাসীভারতীয় সহ বিদেশের বিশিষ্ট বিজ্ঞানীদের আমন্ত্রণ জানানোর কথা বিবেচনা করে দেখতেপারে আমাদের এ সংক্রান্ত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান। আমাদের প্রকল্পগুলিতে গবেষণোত্তরকাজের সঙ্গে যুক্ত করতে পারি অনাবাসী ও বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের। বৈজ্ঞানিক কর্মপ্রচেষ্টারআরেকটি দিক হল, বৈজ্ঞানিক কাজকর্মকে আরও সহজতর করে তোলা। যদি আমরা আগ্রহী হইবিজ্ঞানকে কাজে লাগাতে, তাহলে এদিক থেকেও আমাদের মুখ ফিরিয়ে থাকলে চলবে না। আমাদের বৈজ্ঞানিক প্রতিষ্ঠানগুলিতে দামিযন্ত্রপাতি ও সাজসরঞ্জামগুলি যাতে সহজে ব্যবহার করা যায় এবং তার যথাযথরক্ষণাবেক্ষণের মাধ্যমে কোনরকম নকল বা জাল যন্ত্রপাতির উদ্ভাবন রোধ করা যায়,সেদিকেও দৃষ্টি দিতে হবে আমাদের। স্কুল ও কলেজ সহ দেশের অগ্রণী যাতে সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের কাজে লাগানো যায়সেদিকে দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। ভারতের প্রতিটি প্রান্তে থাকাউচিৎ বিজ্ঞানে উৎকর্ষ লাভের সুযোগ। কারণ তার মাধ্যমে দেশের যুবশক্তি উন্নতমানেরপ্রশিক্ষণের সুযোগ লাভের পাশাপাশি বিশ্ব প্রতিযোগিতায় কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেওবিজ্ঞান ও প্রযুক্তির শ্রেষ্ঠ বিষয়গুলি সম্পর্কে জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জনের মাধ্যমেবিশেষ সুযোগ লাভের অধিকারী হতে পারবেন। এই লক্ষ্য পূরণে জাতীয়গবেষণাগারগুলির কাছে আমি আর্জি জানাব, স্কুল-কলেজগুলির সঙ্গে যুক্তভাবে উপযুক্তপ্রশিক্ষণ কর্মসূচি উদ্ভাবনের জন্য। এর মধ্য দিয়ে আমাদের যে বিশাল বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তিগত পরিকাঠামো রয়েছে, তার যথাযথ ব্যবহার ও রক্ষণাবেক্ষণ সম্ভব হয়ে উঠবে। দেশের প্রধান প্রধান শহরগুলিতেযে সমস্ত গবেষণাগার, গবেষণা প্রতিষ্ঠান এবং বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, সেগুলিকেপরস্পরের সঙ্গে যুক্ত করতে হবে যাতে আদর্শ জ্ঞান ও শিক্ষার কেন্দ্র হিসেবে সেগুলিগড়ে উঠতে পারে। এই কেন্দ্রগুলিতে প্রধান প্রধান পরিকাঠামো সম্পর্কে জ্ঞান ওঅভিজ্ঞতা বিনিময়, জাতীয় বিজ্ঞান কর্মসূচির কাজে উৎসাহদান এবং আবিষ্কার থেকেপ্রয়োগের ক্ষেত্রে সাফল্যের পক্ষে তা হয়ে উঠবে অতীব গুরুত্বপূর্ণ। গবেষণার অভিজ্ঞতা রয়েছে এধরনের কলেজ শিক্ষকদের প্রতিবেশী বিশ্ববিদ্যালয় এবং গবেষণা ও উন্নয়নপ্রতিষ্ঠানগুলির কাজে যুক্ত করা যেতে পারে। স্কুল, কলেজ, পলিটেকনিক সহ বিভিন্নপ্রতিষ্ঠানে যদি নানা ধরনের কর্মসূচির প্রসার ঘটানো যায়, তাহলে বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি ক্ষেত্রের শ্রমশক্তিকে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে পারিপার্শ্বিকতার কাজেওব্যবহার করা সম্ভব। এই লক্ষ্যে একটিবিশেষ পদক্ষেপ হিসেবে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের জন্য এক বিশেষকর্মসূচির সূচনা করছে কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি মন্ত্রক। দৃষ্টান্ত স্বরূপ, একগুচ্ছগ্রাম ও আধা-শহর এলাকাকে বেছে নিয়ে কিছু কিছু প্রযুক্তির প্রয়োগ আমরা করতে পারি।কৃষি ও জৈব বর্জ্যকে রূপান্তরের মাধ্যমে বিদ্যুৎ, নির্মল জল, শস্যের প্রক্রিয়াকরণএবং হিমঘরের মতো ব্যবস্থাপনার কাজে ব্যবহারের উপযোগী করে তুলতে পারি। পরিকল্পনা, সিদ্ধান্ত গ্রহণএবং প্রশাসন ও পরিচালনের কাজে বিজ্ঞানের এই ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের নাগরিক, গ্রাম পঞ্চায়েত,জেলা এবং রাজ্যগুলির বিকাশের লক্ষ্য পূরণে ভূ-তথ্য ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করে তোলারপ্রয়োজন। ভারতের সমীক্ষা বিভাগ, ইসরো এবং কেন্দ্রীয় বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রক এই রূপান্তরমুখী কাজের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে যুক্ত হতে পারে। নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যেবর্জ্য থেকে সম্পদ সৃষ্টি ও তার ব্যবস্থাপনার দিকে আমাদের বিশেষভাবে দৃষ্টি দিতেহবে যাতে বৈদ্যুতিন বর্জ্য, জৈব চিকিৎসা সংক্রান্ত বর্জ্য, প্লাস্টিক বর্জ্য, কঠিনবর্জ্য এবং তরল বর্জ্যের মতো সমস্যার কার্যকর সমাধান সম্ভব হয়ে উঠতে পারে। দূষণমুক্ত কার্বন প্রযুক্তি,জ্বালানি শক্তির সাশ্রয়ের জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তি এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিশক্তির দক্ষ ব্যবহারের মাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যে গবেষণা ও উন্নয়নের কাজকে আমরা আরওএগিয়ে নিয়ে চলেছি। ২০১৬-র জানুয়ারিতে যেকর্মসূচিটির সূচনা করা হয়েছিল সেই ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’য় একটি গুরুত্বপূর্ণক্ষেত্র হল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি। এই ধরনের আরও দুটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হল ‘অটলউদ্ভাবন মিশন’ এবং ‘নিধি’। এই কর্মসূচিগুলির লক্ষ্য হল উদ্ভাবন শক্তি পরিচালিতশিল্পের উপযোগী এক পরিবেশ গঠন। এছাড়াও, সিআইআই, ফিকি এবং উচ্চ প্রযুক্তির বেসরকারিসংস্থাগুলির সঙ্গে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের বিষয়টিকেও আমরা অনুসরণ করে চলেছিযাতে উদ্ভাবনের উপযোগী পরিবেশকে আরও জোরদার করে তোলা যায়। জাতির কৌশলগত চিন্তাভাবনারকাজে খোরাক যোগাতে বিশেষ অবদান রয়েছে দেশের বিজ্ঞানীদের। মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রেবিশ্বের এগিয়ে থাকা দেশগুলির মধ্যে ভারত তার স্থান করে নিয়েছে নিজস্ব মহাকাশকর্মসূচির মধ্য দিয়ে। উপগ্রহ উৎক্ষেপণকারী মহাকাশ যান, উপগ্রহ নির্মাণ, উন্নয়নেরকাজে তার ব্যবহার, দক্ষতা ও ক্ষমতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে মহাকাশ প্রযুক্তি ক্ষেত্রেস্বনির্ভরতা অর্জন করেছে আমাদের দেশ। দেশের সশস্ত্র বাহিনীকেবিশেষভাবে শক্তি যুগিয়েছে প্রতিরক্ষা গবেষণা ও উন্নয়ন সংস্থা তার প্রযুক্তিগতপদ্ধতির উদ্ভাবন ও প্রয়োগের মাধ্যমে। ভারতের বিজ্ঞান প্রচেষ্টাকেআন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিযোগিতামুখী করে তোলার লক্ষ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা ওসমন্বয়ের ভিত্তিতে এক কৌশলগত আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্বের জোটবন্ধন গড়ে তোলার কাজেউদ্যোগী হয়েছি আমরা। ব্রিক্‌স-এর মতো একটি বহুপাক্ষিক মঞ্চ সহ প্রতিবেশী দেশগুলিরসঙ্গে নিবিড় ও ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপরও আমরা বিশেষ জোর দিয়েছি। আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে বিজ্ঞানের শ্রেষ্ঠ ব্যবস্থাগুলি সৃষ্টির রহস্য উন্মোচনে নানাভাবে সাহায্যকরে চলেছে আমাদের। পরিশেষে, আমি আরও একবার ঘোষণাকরতে চাই যে দেশের বিজ্ঞানী ও বিজ্ঞান প্রতিষ্ঠানগুলির কাছে সর্বশ্রেষ্ঠ সহযোগিতাও সমর্থনের সুযোগ পৌঁছে দিতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রাথমিক বিজ্ঞান থেকেপ্রযুক্তির বিকাশ ও উদ্ভাবনের মানোন্নয়নে আমাদের বিজ্ঞানীরা যে তাঁদেরকর্মপ্রচেষ্টাকে আরও জোরদার করে তুলবেন সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। আমরা সকলে মিলে গড়ে তুলব ন্যায়ও সমতার ভিত্তিতে এক সমৃদ্ধ রাষ্ট্র। দেশের ১৮ জনশিশু ও কিশোরকে আজ জাতীয় সাহসিকতা পুরস্কার দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। এদের মধ্যে তিনজন পেল মরণোত্তর পুরস্কার। শ্রী মোদীবলেন, পুরস্কার বিজয়ীদের অধিকাংশই উঠে এসেছে গ্রাম এবং নিতান্তই সাধারণ পরিবারগুলিথেকে। শ্রীনরেন্দ্র মোদী বলেন যে এই ধরনের স্বীকৃতি লাভের ঘটনা পুরস্কার বিজয়ীদের কাছ থেকেপ্রত্যাশা বাড়িয়ে দিলআরও বেশি মাত্রায়। তাদের ভবিষ্যৎকর্মপ্রচেষ্টাগুলির জন্যশুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী। আমরাদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার রাষ্ট্রজোট, আসিয়ান এবং ভারতীয় প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্র ও সরকারপ্রধানরা ২০১৮-র ২৫ জানুয়ারি নতুন দিল্লিতে ‘অভিন্ন মূল্যবোধ ও ভবিতব্য’ শীর্ষকমূল ভাবনার সুরে আসিয়ান-ভারত আলোচনা সম্পর্কের ২৫তম বর্ষপূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত একস্মারক বৈঠকে মিলিত হয়েছিলাম। কয়েকসহস্রাব্দব্যাপী দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারতের মধ্যে সভ্যতা-ভিত্তিক সম্পর্ক এবংপারস্পরিক সাংস্কৃতিক বিনিময়ের প্রেক্ষিতকে আসিয়ান এবং ভারতের মধ্যে সহযোগিতার দৃঢ়ভিত্তি হিসাবে গ্রহণ করার কথা আমরা বিশেষভাবে আলোচনা করেছি। রাজনৈতিক-নিরাপত্তা,অর্থনৈতিক এবং সমাজ-সাংস্কৃতিক – এই তিনটি স্তম্ভের ওপর আসিয়ান-ভারত আলোচনাসম্পর্কে বিগত ২৫ বছরে যে সব কাজের অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে, আমরা তার সপ্রশংসস্বীকৃতি দিচ্ছি। আসিয়ানসদস্যভুক্ত দেশগুলিতে এবং ভারতে ২০১৭ জুড়ে এবং ২০১৮-র প্রথম দিকে যে সব স্মারকঅনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে আমাদের গোষ্ঠীর মধ্যে আসিয়ান-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব এবংআসিয়ান-ভারত যুব শীর্ষ বৈঠক, আসিয়ান-ভারত যুব পুরস্কার – যুব নেতৃত্ব কর্মসূচি ও আসিয়ান-ভারতসঙ্গীত উৎসব আয়োজনের প্রশংসনীয় উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। আমরানিম্নলিখিত বিষয়গুলিতে একমত হয়েছি : 2. শান্তি, প্রগতি এবং অভিন্ন সমৃদ্ধির (২০১৬-২০) জন্য আসিয়ান-ভারতঅংশীদারিত্বের কর্মপরিকল্পনা যথাযথ সময়ে এবং সুদক্ষভাবে রূপায়ণের জন্য আমরা উদ্যোগগ্রহণ করব এবং সহযোগিতাকে প্রসারিত করব। 4. আসিয়ান গোষ্ঠী কর্মসূচি, ২০২৫-কে কার্যকরভাবে রূপায়ণের জন্য আমরাআসিয়ান-এর মধ্যে অখণ্ডতা এবং আসিয়ান গোষ্ঠী নির্মাণ প্রক্রিয়াকে সমর্থন জানাব এবংঅবদান রাখার চেষ্টা করব। রাজনৈতিকএবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা 7. সমুদ্র নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিষয়ে অভিন্ন চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায়‘বর্ধিত আসিয়ান মেরিটাইম ফোরাম’ সহ প্রচলিত প্রাসঙ্গিক ব্যবস্থাগুলির মাধ্যমেসামুদ্রিক ক্ষেত্রে যোগাযোগ আরও শক্তিশালী করার বিষয়েও আমরা একমত হয়েছি। এর অতিরিক্ত হিসাবেসীমান্ত পারের অপরাধ যথা – চোরাচালান, মানব পাচার, মাদক চালান, সাইবার অপরাধ,জলদস্যুতা এবং জাহাজে সশস্ত্র ডাকাতির মতো সমস্যা মোকাবিলায় সহযোগিতা আরওশক্তিশালী করার বিষয়েও আমরা একমত হয়েছি। 10. বিশ্বব্যাপী শান্তিকামী মানুষদের কাজেসহযোগিতা, নিরাপত্তা, আইনের শাসন মেনে চলা, সুষম এবং অন্তর্ভুক্ত বিকাশ,সমতা-ভিত্তিক আর্থিক বৃদ্ধি এবং সামাজিক সমন্বয়কে উৎসাহিত করতে ‘ল্যাঙ্কাউইঘোষণাপত্র’কে রূপায়ণের উদ্যোগ বিষয়েও আমাদের মধ্যে ঐকমত্য হয়েছে। 12. সন্ত্রাসবাদ বিরোধিতার ক্ষেত্রেরাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রাসঙ্গিক প্রস্তাবগুলিকে মান্যতা দেওয়ারক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর সঙ্গে একযোগে কাজ করা এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের আন্তর্জাতিকসন্ত্রাসবাদ সংক্রান্ত কনভেনশনের ক্ষেত্রে আলাপ-আলোচনায় অংশ নেওয়ার ক্ষেত্রেও একযোগেকাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা একমত হয়েছি। এই লক্ষ্যে নীল অর্থনীতির ক্ষেত্রেসহযোগিতার বৃদ্ধির বিষয়েও আমরা আলোচনা করেছি এবং এ বিষয়ে সহযোগিতার জন্য একটিসম্ভাব্য রূপরেখা তৈরির জন্য ভারত সরকারের প্রস্তাব গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করাহয়েছে। 16. আসিয়ান-ভারত উড়ান সহযোগিতা ব্যবস্থা সংক্রান্তযে সমঝোতা ২০০৮-এর ৬ নভেম্বর ম্যানিলায় আসিয়ান দেশগুলির পরিবহণ মন্ত্রীদের চতুর্দশবৈঠকে গৃহীত হয়েছে তার আওতায় এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার বিষয়েও কথাবার্তা হয়েছে।আঞ্চলিক বিমান পরিষেবা ব্যবস্থা এবং টেকনিক্যাল, অর্থনৈতিক ও নিয়ন্ত্রণমূলকব্যবস্থা সংক্রান্ত বিমান পরিবহণ সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য আঞ্চলিক বিমান পরিষেবাসংক্রান্ত আসিয়ান-ভারত কর্মীগোষ্ঠীতে এ বিষয়ে আলোচনা শুরু করার বিষয়েও কথাএগিয়েছে। আসিয়ানভুক্ত দেশগুলি ও ভারতের মধ্যে পর্যটন, বাণিজ্যকে উৎসাহ দিতেসংশ্লিষ্ট দেশগুলির মধ্যে আরও বেশি করে বিমান যোগাযোগ গড়ে তোলার বিষয়ে এবারেরশীর্ষ বৈঠকে ঐকমত্য হয়েছে। 18. বিমান উড়ান এবং সামুদ্রিক পরিবহণ ক্ষেত্রেসহযোগিতা শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে আসিয়ান-ভারত বিমান পরিবহণ চুক্তি এবংআসিয়ান-ভারত সামুদ্রিক পরিবহণ সংক্রান্ত চুক্তি দ্রুত চূড়ান্ত করার বিষয়ে আলোচনারঅগ্রগতি হয়েছে। 24. আসিয়ান-ভারত বাণিজ্য পরিষদের মাধ্যমেব্যবসায়ী থেকে ব্যবসায়ীদের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার করা, বেসরকারি ক্ষেত্রে অংশগ্রহণবৃদ্ধি, আসিয়ান ও ভারতীয় পণ্যের ব্র্যান্ড বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে বাণিজ্যমেলার আয়োজন সহ অর্থনৈতিক যোগাযোগকে গভীরতর করার কথা হয়েছে। আমরা আসিয়ান-ভারতবাণিজ্য ও বিনিয়োগ কেন্দ্র স্থাপনের বিষয়ে আশাবাদী। 26. ভারত ও আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির মধ্যেস্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে ২০১৫ সালের পর আসিয়ানের স্বাস্থ্য উন্নয়নকর্মসূচির ভিত্তিতে স্বাস্থ্য পরিকাঠামোকে শক্তিশালী করা, সবার কাছে স্বাস্থ্যপরিষেবা পৌঁছে দেওয়া, সুলভে চিকিৎসা সরঞ্জাম এবং ওষুধপত্রের ব্যবস্থা করা এবং চিরাচরিতচিকিৎসা ব্যবস্থাগুলিকে উন্নত করা। 27. দিল্লি আলোচনা, আসিয়ান-ভারত ভাবনাচিন্তাসংক্রান্ত নেটওয়ার্ক, আসিয়ান-ভারত বিশিষ্ট ব্যক্তিদের বক্তৃতামালা, সংশ্লিষ্টদেশগুলির কূটনীতিকদের প্রশিক্ষণ, ছাত্রছাত্রী, আইনসভার সদস্য, কৃষক, মিডিয়ারসদস্যদের জন্য সাংস্কৃতিক বিনিময় এবং সাংস্কৃতিক পর্যটনকে উৎসাহিত করা ও মানুষেমানুষে যোগাযোগ বৃদ্ধির বিষয়েও এবারের বৈঠকে সদর্থক আলোচনা হয়েছে। 31. পরিবেশ পরিচালন ও জলবায়ু পরিবর্তনসংক্রান্ত বিষয়ে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে, জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত আসিয়ানকর্মীগোষ্ঠীর ২০১৬-২০১৫ – এর কর্মপরিকল্পনা ও অন্যান্য এই ধরণের পরিকল্পনারভিত্তিতে কাজ এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা হয়েছে। উন্নয়নের পার্থক্য দূর করার ক্ষেত্রেসহযোগিতা 36. আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির মধ্যে উন্নয়নেরক্ষেত্রে পার্থক্য দূর করার লক্ষ্যে ভারত যেভাবে সহায়তা বৃদ্ধি করেছে এবং তাঅব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, এবারের শীর্ষ বৈঠকে তাকে স্বাগত জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারতের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষের কয়েক শ্রেণীর আধিকারিকের জন্যভাতার সর্বোচ্চ সীমার বাইরে প্রদত্ত নির্দিষ্ট কিছু ভাতা (রেটিং ভাতা, মানসিক চাপ মোকাবিলা সংক্রান্ত ভাতা, দক্ষতা ভাতা, উড়ান ভাতা এবং নির্দেশকদের জন্য বিশেষ ভাতা) বিষয়ে ডিপিই-র সুপারিশ অনুসারে ভাতার সর্বোচ্চ সীমার বাইরে প্রদত্ত নির্দিষ্ট ভাতার অর্ধেক (বেতন সংস্কারের আগে)/২৫ শতাংশ (বেতন সংস্কারের পর) পরিমাণকে নিয়মিতকরণের সিদ্ধান্ত অনুমোদন করা হয়। বিমানবন্দরের কর্মতৎপরতার সঙ্গে প্রত্যক্ষভাবে যুক্ত আধিকারিক, এয়ার ট্রাফিক কন্ট্রোলার, কম্যুনিকেশন অফিসার এবং পাইলটদের মতো কর্মীরা এই সুবিধা পাবেন। ডঃ বি আর আম্বেদকরের ১২৫তম জন্মবার্ষিকী পালনের অঙ্গ হিসেবে দুটি স্মারক মুদ্রা প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ১০ টাকা এবং ১২৫ টাকা মূল্যের এই দুটি মুদ্রা প্রকাশিত হল বাবাসাহেব আম্বেদকরের মহাপরিনির্বাণ দিবসে। এই উপলক্ষে অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মুষ্টিমেয় এমন কিছু ব্যক্তি রয়েছেন যাঁরা তাঁদের মৃত্যুর ৬০ বছর পরেও জনমানসে সদা জাগ্রত থাকেন। ভারতের বর্তমান অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে ডঃ আম্বেদকরকে যখন আমরা স্মরণ করি, তাঁর দূরদর্শিতা এবং অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গিকে আমরা শ্রদ্ধা না জানিয়ে পারি না। নারীর ক্ষমতায়ন, ভারতের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো, অর্থ ও শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পর্কে ডঃ আম্বেদকরের চিন্তাভাবনার সপ্রশংস উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। রামনবমী-র এই পবিত্র দিনে দেশবাসীকে জানাই আমার অনেক অনেক শুভেচ্ছা! পূজনীয় বাপুজীর জীবনে রামনামের মাহাত্ম্য কতটা ছিল, তা আমরা ওঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্তেই দেখেছি। গত ২৬-শে জানুয়ারি, ‘আসিয়ান গোষ্ঠী’ভুক্ত দেশগুলির প্রতিনিধিরা এখানে এসেছিলেন এবং সঙ্গে নিয়ে এসেছিলেন বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল। অত্যন্ত গর্বের বিষয় যে, তাদের মধ্যে অধিকাংশ দেশ আমাদের সামনে ‘রামায়ণ’ উপস্থাপিত করেছিল। অর্থাৎ, শুধু ভারতেই নয়, পৃথিবীর এই ভূখণ্ডে ‘আসিয়ান গোষ্ঠী’ভুক্ত দেশগুলিতেও রাম ও রামায়ণের প্রেরণা ও প্রভাব আজও ততটাই। আমি আরও একবার আপনাদের সবাইকে ‘রামনবমী’র শুভকামনা জানাচ্ছি! আমার প্রিয় দেশবাসী, প্রতিবারের মত এবারেও আমি আপনাদের কাছ থেকে প্রচুর চিঠি, ই-মেইল, ফোন কল ও মতামত পেয়েছি। কোমল ঠাক্কর সংস্কৃতের ‘অনলাইন কোর্স’ শুরু করার বিষয়ে mygov–এ যা লিখেছেন, সেটা আমি পড়েছি। তথ্যপ্রযুক্তি কর্মী হওয়ার পাশাপাশি সংস্কৃতের প্রতি আপনার এই অনুরাগ দেখে আমার খুব ভাল লাগল। আমি সংশ্লিষ্ট বিভাগকে এই বিষয়ে আপনাকে যাবতীয় তথ্য জানানোর জন্য বলেছি। ‘মন কি বাত’-এর যে সমস্ত শ্রোতা সংস্কৃত নিয়ে কাজ করছেন, আমি তাঁদেরকেও অনুরোধ করছি, কোমল ঠাক্কর-এর এই প্রস্তাবকে কীভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া যায়, সেই বিষয়ে ভাবনা-চিন্তা করতে। ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’-এ বিহারের নালন্দা জেলার বরাকর গ্রামের শ্রী ঘণশ্যাম কুমার-এর মতামত পড়েছি। ভূগর্ভস্থ জলস্তর কমে যাওয়া প্রসঙ্গে আপনি যে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন, তা সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। আপনি গ্রীষ্মকালে পশু-পাখিদের জন্য জলের ব্যবস্থা রাখার অনুরোধ জানিয়েছেন। শকল-জী, আপনার ভাবনা আমি সব শ্রোতা বন্ধুর কাছে পৌঁছে দিয়েছি। শ্রী যোগেশ ভদ্রেশা-র বক্তব্য, আমি যেন এবার যুবাদের স্বাস্থ্য প্রসঙ্গে কিছু বলি। ওঁর মতে, অন্যান্য এশিয় দেশগুলোর তুলনায় আমাদের দেশের যুবারা শারীরিকভাবে দুর্বল। তিনি আগ্রহ প্রকাশ করে জানিয়েছেন, সেই সব ছবি, ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় প্রচার করা উচিৎ। প্রশান্ত-জী, ভারত সরকার ঐদিনই সব ছবি সোস্যাল মিডিয়া এবং ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’-এ শেয়ার করেছে। আপনারা সেগুলি ‘লাইক’ করে, ‘রি-ট্যুইট’ করে আপনাদের পরিচিত মহলে ছড়িয়ে দিন। চেন্নাই থেকে অঙ্ঘা ও জায়েশ আর অনেক শিশুই ‘একজাম ওয়ারিয়ার’ বইয়ের শেষে যে Gratitude Cards দেওয়া আছে, সেখানে ওরা নিজেদের মনে যে যে ভাবনা এসেছে, সেগুলিই লিখে আমার কাছে পাঠিয়ে দিয়েছে। অঙ্ঘা, জায়েশের মত সব শিশুকেই বলতে চাই যে, তাদের পাঠানো এই সব চিঠি পড়লে আমার সারা দিনের ধকল, পরিশ্রম একদম ছু-মন্তর হয়ে উড়ে যায়। ‘কিষাণ মেলা’ ও চাষবাস নিয়ে সারা দেশে যে কর্মকাণ্ড চলছে, সেই বিষয়েও কৃষক ভাই-বোনেরা আমায় চিঠি পাঠিয়েছেন। জলসংরক্ষণ বিষয়ে কিছু সচেতন নাগরিক আমাকে পরামর্শ পাঠিয়েছেন। যখন থেকে আকাশবাণীর মাধ্যমে আমরা এই জনপ্রিয় অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’ প্রচার করছি, তখন থেকেই আমি লক্ষ্য করছি, এই গ্রীষ্মকাল ও গরমের সংকট নিয়ে বেশি বেশি চিঠি আসছে। পরীক্ষার আগে পরীক্ষার্থী বন্ধুদের কাছ থেকেও তাদের পরীক্ষা নিয়ে দুশ্চিন্তার চিঠিও আমি পাচ্ছি। উৎসবের মরশুমে আমাদের নানান উৎসব, আমাদের সংস্কৃতি ও পরম্পরা নিয়েও অনেক চিঠি আসছে। আর এই সব ভাবনাই দেশের আমূল পরিবর্তনের শক্তি ধরে। যখন আপনাদের পাঠানো চিঠি পড়ে আমি জানতে পারি যে, আসামের করিমগঞ্জের এক রিক্সাচালক আহমদ আলি, নিজের ইচ্ছাশক্তিতে ভর করে গরীব শিশুদের জন্য নয়টি স্কুল বানিয়ে দিয়েছেন, তখনই এই দেশের অদম্য ইচ্ছাশক্তির পরিচয় পাই। যখন আমি কানপুরের ডাক্তার অজিত মোহন চৌধুরীর কাহিনি শুনতে পাই, যিনি, ফুটপাথে ফুটপাথে ঘুরে এই ডাক্তার ফুটপাথবাসী ভাই-বোনেদের চিকিৎসা করেন এবং বিনামূল্য ওষুধও দেন—তখনই এদেশের সহমর্মিতা এবং মনুষ্যত্বের জন্য গর্ব হয়। তের বছর আগে সময় মত চিকিৎসার অভাবে কলকাতার ট্যাক্সিচালক সইদুল লস্করের বোনের মৃত্যু হয়। সইদুল তখনই হাসপাতাল তৈরি শপথ নেন, যাতে চিকিৎসার অভাবে কোনও গরীব মানুষ মারা না যান। এক ইঞ্জিনিয়ার তরুণী তো তাঁর প্রথম মাইনে সইদুলকে দিয়ে দেন। এরকমই অনেক অনেক প্রেরণা যোগানো ঘটনা আমার দেশের পরিচয় বহন করে। আজ সারা বিশ্বই ভারতবর্ষকে অন্য চোখে দেখে। আজ যখন ভারতবর্ষের নাম অত্যন্ত সম্মানের সঙ্গে উচ্চারিত হয়, তখন এর পেছনে এই দেশের সন্তান-সন্ততিদের উদ্যম লুকিয়ে থাকে। আজ, আশা-আকাঙ্ক্ষায় ভরা আত্মবিশ্বাসের এক ইতিবাচক পরিবেশ তৈরি হয়েছে। এই আত্মবিশ্বাস, এই ইতিবাচক মানসিকতা ‘New India’-র সঙ্কল্পকে বাস্তবায়িত করবে, স্বপ্ন সার্থক হবে। আমার প্রিয় দেশবাসী, আগামী কয়েক মাস কৃষক ভাই-বোনেদের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠবে। কারণ চাষবাস সম্পর্কিত প্রচুর চিঠি এসেছে। মহাত্মা গান্ধীর কথাই যদি ধরি, বা শাস্ত্রীজী কি লোহিয়াজী বা চৌধুরী চরণ সিং বা চৌধুরী দেবীলাল জী — এঁরা প্রত্যেকেই কৃষি ও কৃষকভাইদের এই দেশের অর্থব্যবস্থা ও জনজীবনের এক গুরুত্বপূর্ণ অংশ বলে মনে করতেন। শ্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী বৃক্ষ, উদ্ভিদ, অরণ্য ইত্যাদির সংরক্ষণ এবং উন্নততর কৃষি-প্রক্রিয়ার আবশ্যকতার উপর সর্বদা গুরুত্ব দিতেন। ডঃ রামমনোহর লোহিয়া আমাদের কৃষকদের জন্য উন্নততর উপার্জন, উন্নততর সেচ-ব্যবস্থা আর এই সব বিষয়কে সুনিশ্চিত করার জন্য এবং খাদ্য ও দুগ্ধ উৎপাদনকে বাড়ানোর জন্য সার্বিক জনজাগরণের কথা বলেছিলেন। ১৯৭৯ সালে চৌধুরী চরণ সিং তাঁর ভাষণে কৃষকদের নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ ও নতুন আবিষ্কার করার জন্য আবেদন করেছিলেন, এর আবশ্যকতার উপর জোর দিয়েছিলেন। আমি কিছুদিন আগে দিল্লিতে আয়োজিত কৃষি-উন্নতি মেলায় গিয়েছিলাম। স্বল্প ভূমির এই রাজ্য এক বিশাল কাজ করে দেখিয়েছে। আমাদের মেঘালয়ের কৃষকরা ২০১৫-১৬ বর্ষে বিগত পাঁচ বছরের তুলনায় রেকর্ড পরিমাণ উৎপাদন করেছে। ওঁরা দেখিয়েছেন, যদি লক্ষ্য স্থির থাকে, পূর্ণ আত্মবিশ্বাস থাকে, মনে প্রতিজ্ঞা থাকে তাহলে সব সম্ভব করে তোলা যায়। আজ, কৃষকদের পরিশ্রমের সঙ্গে প্রযুক্তির মিলন হয়েছে। যার ফলে কৃষি-উৎপাদকদের যথেষ্ট শক্তি লাভ হচ্ছে। আমার কাছে যে চিঠি এসেছে, তাতে আমি দেখলাম, অনেক কৃষক বন্ধুরা MSP-র বিষয়ে লিখেছিলেন এবং ওঁরা চাইছেন আমি এই বিষয়ে ওঁদের সঙ্গে বিস্তারিত আলোচনা করি। ভাই ও বোনেরা, এই বছরের বাজেটে কৃষকদের ফসলের উচিৎ মূল্য দেওয়ার জন্য এক বিরাট সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এটা ঠিক করা হয়েছে যে, নির্দিষ্ট ফসলের জন্যে MSP, কম করে লগ্নির দেড় গুণ করা হবে। এছাড়া, কৃষকদের ফসলের উচিৎ দাম যাতে দেওয়া যায়, তার জন্য দেশে ‘Agriculture Marketing Reform’-এর উপর ও বিস্তারিত কাজ চলছে। গ্রামের স্থানীয় বাজার, পাইকারী বাজার যাতে বিশ্ববাজারের সঙ্গে যুক্ত হয়, তার চেষ্টা চলছে। কৃষকদের নিজের উৎপাদন বিক্রি করার জন্য যাতে অনেক দূর যেতে না হয় — তার জন্য দেশের বাইশ হাজার গ্রামীণ হাটের জরুরি পরিকাঠামোর সঙ্গে upgrade করে APMC আর e-NAM Platform–এর সঙ্গে যুক্ত করা হবে। তার মানে, একপ্রকার ক্ষেতের থেকে দেশের যে কোনও বাজারের সঙ্গে connect করা যায়, এমন ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে। দেশ কীভাবে এই উৎসব উদ্‌যাপন করবে? ‘স্বচ্ছ ভারত’ তো আমাদের সঙ্কল্প হিসেবে আছেই, ১২৫ কোটি দেশবাসী কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কীভাবে গান্ধীজীকে এর থেকে শ্রেষ্ঠ শ্রদ্ধাঞ্জলী জ্ঞাপন করতে পারে? কি কি নতুন কার্যক্রম তৈরি করা যেতে পারে? আপনাদের কাছে অনুরোধ, আপনারা mygov-এর মাধ্যমে আপনাদের চিন্তাভাবনা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিন। ‘গান্ধী ১৫০’–এর লোগো কী হতে পারে? স্বাস্থ্যের ক্ষেত্রে আজ দেশ ‘conventional approach’ অর্থাৎ প্রচলিত পদ্ধতিকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে। স্বাস্থ্যের সঙ্গে যুক্ত সমস্ত কাজ আগে স্বাস্থ্য মন্ত্রকের দায়িত্বে ছিল। Preventive Health Care খুব সস্তা এবং সহজও বটে। আমরা Preventive Health Care সম্পর্কে যতটা সচেতন হব, ব্যক্তি, পরিবার এবং সমাজ — সবাই এতে লাভবান হবে। জীবন সুস্থ রাখার প্রথম শর্তই হল পরিচ্ছন্নতা। এছাড়া, সারা দেশে ‘Health Wellness Centre’ তৈরি করার দিকে জোর কদমে কাজ চলছে। ‘Preventive Health Care’ হিসেবে যোগ নতুন ভাবে বিশ্বে নিজের একটা পরিচিতি তৈরি করেছে। যোগ সুস্থ ও সক্ষম দুই-ই হওয়ার প্রতিশ্রুতি দেয়। এটা আমাদের সবার দায়বদ্ধতার পরিণাম যে, যোগ আজ এক গণ আন্দোলন হিসেবে গড়ে উঠেছে এবং ঘরে ঘরে পৌঁছে গেছে। এই বছর ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ ২১-শে জুন — আর ১০০ দিনও বাকি নেই। গত তিনটি ‘আন্তর্জাতিক যোগা দিবস’-এ দেশ-বিদেশের প্রতিটি জায়গায় সমস্ত মানুষ খুব উৎসাহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছিলেন। এবারও আমাদের এটা সুনিশ্চিত করতে হবে যে, আমরা নিজেরা যোগ করব এবং পরিবার-বন্ধু সবাইকে যোগ করার জন্য উৎসাহ দেব। নতুন ও অভিনব রূপে শিশু, তরুণ এবং বয়স্ক মানুষদের মধ্যে, পুরুষ হোক বা মহিলা — যোগকে জনপ্রিয় করে তুলতে হবে। দেশের টিভি এবং ইলেক্ট্রনিক মিডিয়া যোগ নিয়ে আলাদা আলাদা অনুষ্ঠান করে থাকে। কিন্তু এখন থেকে ‘যোগা দিবস’ পর্যন্ত এক অভিযান হিসেবে যোগের প্রতি সচেতনতা কি তৈরি করতে পারবেন? আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি যোগাসনের শিক্ষক নই, কিন্তু আমি ‘যোগাভ্যাসী’। আমি আপনাদের সঙ্গে এই ভিডিও শেয়ার করতে চাই, যাতে আমরা একসঙ্গে আসন ও প্রাণায়াম অভ্যাস করতে পারি। স্বাস্থ্য পরিষেবা অবাধ হোক, সবার সাধ্যের মধ্যে হোক, জনসাধারণের জন্য সস্তা আর সুলভ হোক – এর জন্য পর্যাপ্ত চেষ্টা করা হচ্ছে। আজ সমগ্র দেশে তিন হাজারের বেশি জন-ঔষধি কেন্দ্র খোলা হয়েছে, যেখানে ৮০০-রও বেশি ওষুধ কম দামে বিক্রির ব্যাবস্থা করা হয়েছে। আরও নতুন কেন্দ্র খোলা হচ্ছে। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের শ্রোতাদের কাছে আমার অনুরোধ, অভাবী মানুষের কাছে জন-ঔষধি কেন্দ্রের কথা পৌঁছে দিন, ওঁদের ওষুধের খরচ অনেক কমে যাবে। ওঁদের অনেক উপকার হবে। হৃদরোগীদের জন্য Heart Stent-এর দাম ৮৫% পর্যন্ত কম করা হয়েছে। কৃত্রিম হাঁটুর খরচও নিয়ন্ত্রণ করে ৫০ থেকে ৭০% পর্যন্ত কম করা গেছে। ‘আয়ুষ্মান ভারত’ যোজনা-র অন্তর্গত প্রায় ১০ কোটি পরিবার অর্থাৎ ৫০ কোটির কাছাকাছি মানুষের চিকিৎসার জন্য এক বছরে ৫ লাখ টাকার খরচ ভারত সরকার এবং বীমা কোম্পানি মিলে বহন করবে। দেশের বর্তমান ৪৭৯-টি মেডিকেল কলেজের MBBS-এর আসন সংখ্যা বাড়িয়ে প্রায় ৬৮ হাজার করা হয়েছে। সমগ্র দেশের জনসাধারণের জন্য উন্নত চিকিৎসা এবং স্বাস্থ্য–পরিষেবা পৌঁছে দিতে বিভিন্ন রাজ্যে নতুন AIIMS-এর স্থাপন করা হচ্ছে। প্রতি তিনটি জেলার মধ্যে একটি করে নতুন মেডিক্যাল কলেজ খোলা হবে। ২০২৫ সালের মধ্যে দেশকে যক্ষ্মা-মুক্ত করার লক্ষ্য রাখা হয়েছে। এটা বড় কঠিন কাজ। প্রত্যেক মানুষের কাছে এই সচেতনতা পৌঁছানোর জন্য আপনার সাহায্য দরকার। যক্ষ্মা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য আমাদের সবাইকে একসঙ্গে চেষ্টা করতে হবে। আমার প্রিয় দেশবাসী, ১৪-ই এপ্রিল ডক্টর বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্ম-জয়ন্তী। অনেক বছর আগে ডক্টর বাবাসাহেব আম্বেদকর ভারতে শিল্পায়নের কথা বলেছিলেন। দেশের একটি মানুষও যেন দারিদ্র্যের মধ্যে বেঁচে না থাকে, এইরকম চাইতেন ডক্টর আম্বেদকর। দরিদ্রদের দান দিয়ে যে দারিদ্র্য ঘোচানো সম্ভব নয়, এই কথাটিও দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করতেন। আজ ‘মুদ্রা যোজনা’, ‘স্টার্ট-up ইন্ডিয়া’, ‘স্ট্যান্ড-up ইন্ডিয়া’র মতো প্রকল্পগুলি আমাদের দেশে যুব-উদ্যোক্তা – যুব-উদ্ভাবক তৈরি করছে। ভারতের বিভিন্ন সমুদ্রতটে তৈরি হচ্ছে নতুন নতুন বন্দর আর পুরোনো বন্দরগুলির সংস্কারের কাজও হচ্ছে একইসঙ্গে। ১৯৪০ এর দশকে যখন সারা পৃথিবী দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ, দুই শক্তিশালী ক্ষমতার মধ্যে শীতল যুদ্ধ আর দেশভাগের দুশ্চিন্তায় উদ্বেল, ঠিক সেইসময়ে ডক্টর আম্বেদকর ‘টিম ইন্ডিয়া’ অথবা ভারতের আত্মার কল্পনা করেছিলেন। উনি Federalism বা মৈত্রীতন্ত্রের গুরুত্ব বুঝতে পেরেছিলেন আর তাই মনে করতেন যে দেশের উন্নতির জন্যে কেন্দ্র আর রাজ্যগুলিকে একসঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করতে হবে। ডক্টর আম্বেডকরের জন্মজয়ন্তীকে ঘিরে ১৪ই এপ্রিল থেকে ৫ই মে সারা দেশে ‘গ্রাম স্বরাজ অভিযান’-এর আয়োজন করা হচ্ছে। দেশব্যাপী এই অভিযানে থাকবে গ্রামোন্নয়ন, দরিদ্রকল্যাণ আর সামাজিক ন্যায়ের নানান কার্যক্রম। আপনাদের প্রতি আমার সনির্বন্ধ অনুরোধ যে, এই জাতীয় অভিযানে সবাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নিন। আমার প্রিয় দেশবাসী, কিছুদিনের মধ্যেই পরপর অনেকগুলি উৎসব, পার্বন আসছে : মহাবীর জয়ন্তী, হনুমান জয়ন্তী, ইস্টার আর বৈশাখী। মহাবীর জয়ন্তী ভগবান মহাবীরের ত্যাগ আর তপস্যাকে স্মরণ করার দিন। অহিংসার প্রচারক ভগবান মহাবীরের জীবন আর দর্শন আমাদের কাছে প্রেরণা। সকল দেশবাসীকে আমি জানাই মহাবীর জয়ন্তীর শুভেচ্ছা। ইস্টার এলেই আমাদের মনে করি য়ে দেয় যীশু খ্রীষ্টের কথা, যিনি চেয়েছিলেন মানবতার শান্তি, শুনিয়েছিলেন সদ্ভাব, ন্যায়, দয়া আর করুণারবাণী। আবার একবার আপনাদের সবাইকে আসন্ন সকল উৎসবের অনেক শুভকামনা জানাই! অনেক অনেক ধন্যবাদ! ওমানের বিদেশ মন্ত্রী মিঃ ইউসুফ বিন আলাওয়াই বিন আবদুল্লাহ্‌ আজ এখানেসাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ভারত ও ওমানের মধ্যে নিবিড় সম্পর্কের দিকগুলি নিয়ে আলোচনা করেনপ্রধানমন্ত্রী এবং মিঃ ইউসুফ বিন আলাওয়াই বিন আবদুল্লাহ্‌। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ স্বাধীনতা-পরবর্তী সময়ে সাহসিকতার পুরস্কার প্রাপকদের সম্মানজানাতে একটি নতুন ওয়েবসাইটের সূচনা করেছেন। একগুচ্ছট্যুইট বার্তায় http://gallantryawards.gov.in নামে এই ওয়েবসাইটটির সূচনা ঘোষণা করে প্রধানমন্ত্রীবলেন, এই পোর্টালে আমাদের দেশের সাহসী পুরুষ ও মহিলা অসামরিক এবং সামরিক বাহিনীরকর্মীদের কাজের কথা সংরক্ষিত থাকবে। “স্বাধীনতারপর থেকে আমাদের দেশের যেসব বীররা সাহসিকতার পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন তাঁদের স্মরণে http://gallantryawards.gov.in এই সাইটটি চালুকরা হল। http://gallantryawards.gov.in এই পোর্টালটিআমাদের দেশের অসামরিক এবং সামরিক ক্ষেত্রে অসম সাহসী মহিলা ও পুরুষদের কাহিনীজানাবে এবং সংরক্ষণ করবে। তেল ও গ্যাসের বাজারে ভারতের গুরুত্বপূর্ণ স্থানের কথা আজ পুনরায় বললেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, তেলের বাজার সম্পূর্ণ উৎপাদক-পরিচালিত – পরিমাণ এবং মূল্য নির্ধারিত হয় তেল উৎপাদনকারী দেশগুলির দ্বারা। পাশাপাশি, তিনি গ্যাস ক্ষেত্রে বেসরকারি অংশগ্রহণের ভূমিকা নিয়ে আলোচনা করেন। প্রযুক্তির কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী উচ্চ-তাপমাত্রার প্রযুক্তি প্রয়োগে সহায়তার আহ্বান জানান বাণিজ্যিকভাবে প্রাকৃতিক গ্যাস ব্যবহারের ক্ষেত্রে। তিনি এছাড়াও, অর্থ প্রদান ক্ষেত্রে নিয়মকানুনের পর্যালোচনা করার কথা বলেন যাতে স্থানীয় মুদ্রায় অস্থায়ীভাবে কিছুটা স্বস্তি আসে। প্রসঙ্গত, প্রধানমন্ত্রী তাঁর সরকার যে সব উন্নয়নমূলক কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ করেছে তার ব্যাখ্যাও করেন আলোচনায়। মহামান্য রাষ্ট্রপতি মেহমুদ আব্বাস, প্যালেস্টাইন ওভারতের প্রতিনিধিগণ, প্রচার মাধ্যমেরসদস্যগণ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, কোনো ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীরপ্রথমবারের মত রামাল্লা আসা অনেক আনন্দের বিষয়| রাষ্ট্রপতি আব্বাস, আপনি আমারসম্মানে যে বক্তব্য রেখেছেন এবং যেভাবে উষ্ণ অভ্যর্থনায় আমার তথা আমার সঙ্গেরপ্রতিনিধিগণকে অসাধারণভাবে স্বাগত জানিয়েছেন, তার জন্য আমি আপনাকে ধন্যবাদ জ্ঞাপনকরছি| প্যালেস্টাইনের জনগণ প্রতিনিয়তপ্রতিকুলতা ও সংকটের পরিস্থিতিতে অদ্ভুত দৃঢ়তা ও সাহসের পরিচয় দিয়েছেন| পরিস্থিতিরমোকাবিলায় পাহাড়ের মতো দৃঢ়তার পরিচয় দিয়েছেন| আমরা কর্মশক্তিপূর্ণ প্যালেস্টাইনেরজন্য এই যোগদানকে ভিত্তি হিসেবে মনে করি| দ্বিপাক্ষিক ক্ষেত্রে আমরা মন্ত্রীপর্যায়ের যুগ্ম কমিশন সভার মধ্য দিয়ে আমাদের সম্পর্ককে আরও বেশি গভীর করার জন্যএকমত হয়েছি| এটা জানাতে পেরে আমি আনন্দিত যে,আমরা এই বছর থেকে যুব অংশের আদান-প্রদান পঞ্চাশ থেকে বাড়িয়ে একশজন পর্যন্ত করব| আমাদের আজকের আলোচনায় আমিরাষ্ট্রপতি আব্বাসকে পুনরায় আশ্বস্ত করেছি যে, ভারত প্যালেস্টাইনের জনগণের স্বার্থরক্ষায় প্রতিশ্রুতিবদ্ধ| শান্তিপূর্ণ পরিবেশে প্যালেস্টাইনশীঘ্রই এক সার্বভৌম, স্বাধীন দেশ হবে বলে আশা করে ভারত| রাষ্ট্রপতি আব্বাস ও আমি সাম্প্রতিকসময়ের আঞ্চলিক ও বৈশ্বিক উন্নয়নের বিষয়ে আলোচনা করেছি, যার সম্পর্ক প্যালেস্টাইনেরশান্তি, সুরক্ষা ও শান্তি প্রক্রিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত| ভারত এই ক্ষেত্রে শান্তি ওস্থায়িত্বের জন্য বিশেষভাবে আশাবাদী| আমাদের বিশ্বাস যে, শেষ পর্যন্তপ্যালেস্টাইনের সমস্যার স্থায়ী উত্তর এমন এক আলোচনা ও বোঝাপড়ার মধ্যে নিহিত রয়েছে,যার মধ্য দিয়ে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের পথ পাওয়া যাবে| শুধুমাত্র গভীর কূটনীতি ও দূরদর্শিতারমাধ্যমেই সহিংসতার চক্র ও ইতিহাসের ভার থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারে| মহামান্য, আমি অন্তর থেকে আপনারদর্শনীয় আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করছি| আমি সোয়া কোটি ভারতবাসীর পক্ষ থেকেপ্যালেস্টাইনের জনগণের প্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য আন্তরিক শুভকামনা জ্ঞাপন করছি| তরুণ শিল্পোদ্যোগীদের নিয়ে আয়োজিত গতসপ্তাহের এক অনুষ্ঠানেও অংশগ্রহণ করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী। সিইও’দের ছটি দল এদিন ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘কৃষকদের আয় ও উপার্জন দ্বিগুণ করেতোলা’, ‘বিশ্বমানের পরিকাঠামো’, ‘আগামী দিনের নগরী’, ‘আর্থিক ক্ষেত্রের সংস্কার’এবং ‘আগামী ২০২২ সালের মধ্যে এক নতুন ভারত গঠন’-এর মতো বিষয়গুলির ওপর তাদেরউপস্থাপনা পেশ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহণের সঙ্গেযাঁরা বর্তমানে যুক্ত রয়েছেন, তাঁরা খুব মনোযোগ দিয়ে উপস্থাপনাগুলি লক্ষ্য করেছেন।নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে এই উপস্থাপনাগুলিকে যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হবে বলেই মনে করেনতিনি। শ্রী মোদী বলেন, সরকারি প্রশাসন ও পরিচালনের ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষেরঅংশগ্রহণ একান্ত জরুরি। সেই কারণে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতার যে প্রচেষ্টা সিইও’রাচালিয়ে যাচ্ছেন, তাতে দেশের নাগরিক-সমাজ তথা সমগ্র জাতিই বিশেষভাবে উপকৃত হবে। কৃষি ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজনের দৃষ্টান্ত উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন,কৃষকদের আয় ও উপার্জন দ্বিগুণ করে তোলার মতো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য পূরণে বিভিন্নপক্ষকে সঙ্গে নিয়ে আমাদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ওপরবিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে তিনি বলেন, পরিকাঠামোর ঘাটতি কৃষি ক্ষেত্রে প্রভূতক্ষতিসাধন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তদেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তনের সূচনা করেছে। ইউরিয়ার যোগান ও উৎপাদন সহজও সুলভ করে তুলতে যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তারও উল্লেখ করেন তিনি।অতিরিক্ত উৎপাদনের জন্য বিশেষ পারিশ্রমিক, সার উৎপাদনে গ্যাসের মূল্য স্থির করেদেওয়া সহ নানা পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও তিনি প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন। এরফলে, দেশেবর্তমানে যে অতিরিক্ত ২০ লক্ষ টন ইউরিয়া উৎপাদিত হচ্ছে, সেকথারও উল্লেখ ছিল এদিনপ্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। তিনি বলেন, অকৃষি ক্ষেত্রে ইউরিয়া ব্যবহারের প্রবণতা বন্ধকরা সম্ভব হয়েছে ঐ সারটির উৎপাদনে নিম কোটিং যুক্ত করার ফলে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নগদ অর্থে লেনদেনের পথ থেকে দেশকে সরিয়ে আনতে আগ্রহীকেন্দ্রীয় সরকার। এই বিষয়টির প্রসারে সরকারের সঙ্গে সহযোগিতা করার জন্য তিনিআহ্বান জানান তরুণ সিইও’দের। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নববর্ষের সূচনায় বিশ্ব জুড়ে গুজরাটিদেরঅভিনন্দন জানিয়েছেন। গুজরাটিরা দীপাবলির পরের দিন থেকেই নববর্ষের সূচনা পালন করেথাকেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আজ দীপাবলির পরের দিন গুজরাটিরা নতুন বছরের সূচনাহিসেবে পালন করে থাকেন। বিশ্ব জুড়ে গুজরাটিদের নববর্ষের অভিনন্দন। শ্রী মোদী উল্লেখ করেন যে পুরস্কারগুলি সরকারের গুরুত্ব প্রদানের দিকগুলি তুলে ধরে। শ্রী মোদী জানান, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা, দীনদয়াল উপাধ্যায় কৌশল যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা ও ডিজিটাল মাধ্যমে লেন-দেন-এর মত গুরুত্বপূর্ণ সরকারী প্রকল্প রূপায়ণের জন্য পুরস্কার প্রদান করা হচ্ছে এবং এগুলি নতুন ভারতের জন্য খুবই জরুরি। বিকাশে আগ্রহী জেলা প্রসঙ্গে প্রধান মন্ত্রী বলেন, এই পর্যায়ের ১১৫ জেলা সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির বিকাশের চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে। জন-ভাগীদারী বা উন্নয়নের কাজে জনসাধারণের অংশগ্রহণের তাৎপর্যের ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, ২০২২ সালে, দেশের ৭৫ তম স্বাধীনতা দিবস, স্বাধীনতা সংগ্রামিদের স্বপ্নগুলি পূরণের কাজগুলি করতে আমাদের উৎসাহ যোগাবে। এই চুক্তির আওতায় ভারতীয় প্রশিক্ষণ সংস্থাটি নামিবিয়ার উচ্চতর সরকারিচাকরির ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রশিক্ষণের বিষয়ে সহযোগিতা করবেএনআইপিএএম-এরসঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ইম্ফল সফর করেন। এক বিশাল জনসভায় তিনি মোরে-তে সুসংহত সীমান্ত চৌকির উদ্বোধন করেন। সাওমবুঙ্গ-এ তিনি দোলাইথাবি বাঁধ প্রকল্প, ভারতীয় খাদ্য নিগমের মজুতভাণ্ডার সহ জল সরবরাহ ও পর্যটন সংক্রান্ত একাধিক প্রকল্পের সূচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী, ৪০০ কিলোভোল্ট বিদ্যুৎবাহী শিলচর-ইম্ফল ডবল সার্কিট লাইনের উদ্বোধন করেন। ক্রীড়াক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক প্রকল্পেরও তিনি শিলান্যাস করেন। জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বীর স্বাধীনতা সংগ্রামীদের বিশেষ করে, মণিপুরের মহিলা স্বাধীনতা সংগ্রামীদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। অবিভক্ত ভারতে মণিপুরের মইরাং-এ স্থাপিত প্রথম অন্তর্বর্তী সরকার গঠনের কথাও তিনি স্মরণ করেন। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের মানুষের কাছ থেকে আজাদ হিন্দ ফৌজ যে বিপুল সমর্থন পেয়েছিল, তার কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ‘নতুন ভারতে’র অগ্রগতিতে মণিপুর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। পর্যটন ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত যে সমস্ত প্রকল্পের আজ উদ্বোধন করা হয় সেগুলির কথাও তিনি উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী জানান, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজ আরও দ্রুতগতিতে শেষ করতে ‘প্রগতি’ ব্যবস্থায় ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রকল্পগুলির কাজকর্মের অগ্রগতিতে নজর রাখা হচ্ছে। তিনি বলেন, ‘প্রগতি’ বৈঠকের মাধ্যমে ১২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি থমকে থাকা বিভিন্ন প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সমস্যার সমাধান করা হয়েছে। প্রসঙ্গত তিনি জল সরবরাহ সংক্রান্ত একাধিক প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার কথাও উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবং মণিপুর সরকার উভয় পক্ষই ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’-এর উদ্দেশ্য পূরণের লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি রাজ্য সরকারের ‘গো টু হিল্‌স, গো টু ভিলেজ’ কর্মসূচির প্রশংসা করেন। ‘পরিবহণের মাধ্যমে পরিবর্তন’ আনার যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, তার ভিত্তিতে উত্তর-পূর্বে উন্নত সড়ক, রেল ও বিমান যোগাযোগ ব্যবস্থার কথাও তিনি উল্লেখ করেন। স্বচ্ছ ভারত ও অনাময় অভিযান সহ উন্নয়নকামী জেলাগুলির মধ্যে রাজ্যের চান্দেল জেলার অন্তর্ভুক্তির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রে মণিপুরের অগ্রগতির কথা তুলে ধরেন। মহিলা ক্ষমতায়ন ক্ষেত্রে মণিপুর সামনে থেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের উজ্জ্বল ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব মেরি কম-এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারতকে বিশ্ব আঙিনায় শক্তিধর দেশে পরিণত করতে উত্তর-পূর্বাঞ্চল গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। জাতীয় কৃষি বাজার তথা কৃষি বিপণন ব্যবস্থার বৈদ্যুতিন মঞ্চটির আজ আনুষ্ঠানিক সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে কৃষকদের এক সমাবেশেও ভাষণ দেন তিনি। এই জাতীয় কৃষি বিপণন ব্যবস্থায় ইতিমধ্যেই যোগ দিয়েছে দেশের আটটি রাজ্যের ২১টি বাজার। এই ব্যবস্থা কৃষকদের কল্যাণে এক স্বচ্ছ বিপণন পদ্ধতি গড়ে তুলবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। শ্রী মোদী বলেন, এই ঘটনা কৃষিজীবী মানুষের কাছে নিঃসন্দেহে এক নতুন পথের সন্ধান দেবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চলে ভারত ও বাংলাদেশ হল দুটি প্রধানবিকাশশীল দেশ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বুধবারের বৈঠকে আর্থিক দিক থেকে দুর্বলতর শ্রেণীর সংরক্ষণে জন্য সংবিধান সংশোধন সংক্রান্ত ক্যাবিনেট বিজ্ঞপ্তি বিষয়ক সরকারি স্মারকলিপিতে সংশোধনের অনুমোদন পাওয়া গেছে। মুম্বাইয়েপদপিষ্ট হয়ে মৃত্যুর ঘটনায় গভীর শোক ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। আহতদের জন্য জানাইআমার প্রার্থনা। মুম্বাইয়েরপরিস্থিতির ওপর এখন নিরন্তর নজর রাখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সংবিধানের ৩৪০ধারারআওতায় অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী (ওবিসি)-কে বিভিন্নভাবে ভাগ করার বিষয়টিপরীক্ষা করে দেখার জন্য একটি কমিশন গঠনের প্রস্তাবে আজ সম্মতি দেওয়া হয়। ডঃ এম করুণানিধির প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর শোকবার্তায় আরও বলেছেন, ডঃ এম করুণানিধি আঞ্চলিক আকাঙ্খা এবং জাতীয় প্রগতির পক্ষে আজীবন লড়েছেন। তামিল মানুষজনের কল্যাণে তিনি ছিলেন অঙ্গীকারবদ্ধ এবং তামিলনাড়ুর কন্ঠ যাতে যথাযথভাবে শোনা হয়, সে বিষয়ে তিনি নিশ্চিত করেছিলেন। তিনি যে বিভিন্ন সময়ে ডঃ এম করুণানিধির সঙ্গে কথাবার্তা বলেছেন, সে বিষয়টিরও উল্লেখ করেন তাঁর শোকবার্তায়। ডঃ এম করুণানিধির নীতিসমূহ সম্পর্কে ধ্যান-ধারণা এবং একই সঙ্গে তাঁর সামাজিক কল্যাণে একনিষ্ঠতার সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। শ্রী মোদী বলেন, ডঃ এম করুণানিধি গণতান্ত্রিক আদর্শে বিশ্বাসী ছিলেন। একই সঙ্গে, জরুরি অবস্থার ঘোর বিরোধী যে করুণানিধি ছিলেন, সে বিষয়টিও উল্লেখ করেন তাঁর শোকবার্তায়। দেশের ত্রয়োদশ উপ-রাষ্ট্রপতি নির্বাচিত হওয়ায় শ্রীএম ভেঙ্কাইয়া নাইডু’কে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “দেশের উপ-রাষ্ট্রপতিনির্বাচিত হওয়ায় শ্রী এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু গারু’কে অভিনন্দন জানাই। সাফল্যময় ওপ্রেরণামূলক কার্যকালের জন্য আমার শুভেচ্ছা রইল। দলে ও সরকারে এম ভেঙ্কাইয়া নাইডু গারু’র সঙ্গে কাজকরার স্মৃতিতে আমার হৃদয় পরিপূর্ণ। এই সঙ্গলাভের বিষয়টি স্মৃতিতে জাগরূক হয়েথাকবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষার সাজসরঞ্জাম উৎপাদনের ওপর কেন্দ্রীয় সরকার বর্তমানে বিশেষভাবে জোর দিচ্ছে। তুমকুরের কারখানায় যে হেলিকপ্টার নির্মিত হবে তা প্রত্যন্ত ও দুর্গম এলাকায় সেনাবাহিনীর কাজে বিশেষভাবে সাহায্য করবে। এখানে নির্মিত প্রথম হেলিকপ্টারটি ২০১৮-তেই আকাশপথে উড়বে বলে তিনি আশা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, হেলিকপ্টার নির্মাণের এই কারখানায় প্রত্যক্ষ বা পরক্ষোভাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ পাবে দেশের চার হাজার পরিবার। ভারতের শিল্পায়ন সম্পর্কে ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের চিন্তাভাবনার কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র ও অবহেলিত মানুষের ক্ষমতায়নে হেলিকপ্টার তৈরির এই কারখানাটি আম্বেদকরের স্বপ্নকে সফল করে তুলবে। প্রযুক্তিচালিত ‘প্রগতি’র মঞ্চে এটি ছিল প্রধানমন্ত্রীর ২০তম পর্যালোচনা বৈঠক। এরপর, পণ্যও পরিষেবা কর অর্থাৎ, জিএসটি-র আওতায় সকল ব্যবসায়িক ও বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিরনথিভুক্তির বিষয়টি দ্রুত সেরে ফেলার তিনি নির্দেশ দেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবদের। পূর্ত দপ্তরসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষোভ ও অভিযোগ খতিয়ে দেখে সেগুলির নিরসনে গৃহীত ব্যবস্থারঅগ্রগতি ও বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয়নগরোন্নয়ন মন্ত্রককে তিনি নির্দেশ দেন বিশেষ সংবেদনশীলতার সঙ্গে বিষয়টি দেখভালেরজন্য। বৈদ্যুতিন পদ্ধতি-চালিত সরকারি বিপণন ব্যবস্থা বা মঞ্চ ব্যবহারে ব্যবসায়ীরাযাতে উৎসাহিত হন তা নিশ্চিত করার তিনি পরামর্শ দেন কেন্দ্রীয় পূর্ত দপ্তরকে। রেল, সড়কএবং পেট্রোপণ্য ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অথচ বহুদিন ধরে ঝুলে রয়েছে এই ধরনেরপরিকাঠামো প্রকল্পগুলির অগ্রগতিও এদিন ‘প্রগতি’র মঞ্চে খতিয়ে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।এই ধরনের প্রকল্পগুলি বর্তমানে রূপায়িত হচ্ছে মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, অন্ধ্রপ্রদেশ,তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, উত্তরপ্রদেশ, উত্তরাখণ্ড, হিমাচল প্রদেশ এবংঅরুণাচল প্রদেশের মতো রাজ্যগুলিতে। যে প্রকল্পগুলি এদিন প্রধানমন্ত্রীরপর্যালচনাসূচির অন্তর্ভুক্ত ছিল তার মধ্যে রয়েছে – চেন্নাই বিচ-কোরুক্কুপেত তৃতীয়লাইন, চেন্নাই বিচ-আত্তিপাত্তু চতুর্থ লাইন, হাওড়া-আমতা-চাঁপাডাঙ্গা নতুন ব্রডগেজরেলপথ, বারাণসী বাইপাসকে চার-লেনের রাস্তায় রূপান্তর, ৫৮ নম্বর জাতীয় মহাসড়কেরমজফ্‌ফরনগর-হরিদ্বার অংশটিকে চার-লেনের সড়কে রূপান্তর ইত্যাদি। এই ধরনের পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির কাজ দ্রুতসম্পূর্ণ করার ওপরওবিশেষ জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীআবাস যোজনার (শহরাঞ্চল) পর্যালোচনাও ছিল এদিন প্রধানমন্ত্রীর ‘প্রগতি’র বৈঠকেরঅন্যতম আলোচ্য বিষয়০। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পাঠানকোটের জঙ্গি হামলার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তি ও সংগঠনের বিরুদ্ধে দ্রুত কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার আর্জি জানান পাক প্রধানমন্ত্রীর কাছে। এ ব্যাপারে সুনির্দিষ্ট কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা প্রয়োজন সে সম্পর্কিত তথ্যও তিনি বিস্তারিতভাবে জানান মিঃ নওয়াজ শরিফকে। আজ কাঠুয়ায় ইউনিভার্সিটি ইনস্টিটিউট অফ ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনলজির উদ্বোধন করেন।আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া শ্রেণীর জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণের যে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে তার ফলে এই রাজ্যের যুবসম্প্রদায় বিশেষভাবে উপকৃত হবেন বলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। ৫ই সেপ্টেম্বর, ২০১৮ থেকে এনআরটিআই এই আবাসিক ১০৩ জন ছাত্রছাত্রীকে নিয়ে দুটি স্নাতক স্তরের কোর্স-বিএসসি (পরিবহণ প্রযুক্তি) ও ডিবিএ (পরিবহন ম্যানেজমেন্ট) চালু করেছে। তিন বছরের এই স্নাতক স্তরের দুটি বিষয়ে বিভিন্ন বিষয়ের পাঠ্য থাকবে যা বিশ্বের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলির মান অনুযায়ী তৈরি করা হয়েছে। যৌথ গবেষণা ছাড়াও ছাত্রছাত্রী ও শিক্ষকদের বিনিময় কর্মসূচির জন্য এনআরটিআই সেরা আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সহযোগিতা স্হাপন করবে। বিজয় দিবস উপলক্ষে ১৯৭১ – এর যুদ্ধে সামিল বীর সেনানীদের স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ বিজয় দিবসে ১৯৭১ – এর যুদ্ধে সামিল বীর সেনানীদের অদম্য মানসিকতাকে স্মরণ করি। এদের অটল বীরত্ব ও দেশাত্মবোধ আমাদের দেশকে সুরক্ষিত করেছিল। গুজরাটের বন্যাবিধ্বস্ত অঞ্চলগুলির পরিস্থিতি বুধবার আকাশপথে খতিয়ে দেখেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। পরেআমেদাবাদ বিমানবন্দরে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে বন্যার ত্রাণ ও উদ্ধার কাজেরওপর্যালোচনা করেন তিনি। বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপানি সহরাজ্যের অন্যান্য মন্ত্রী এবং রাজ্য সরকার, বিপর্যয় মোকাবিলা সংস্থা তথাপ্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের শীর্ষ কর্তা-ব্যক্তিরা। বিপর্যস্তজল ও বিদ্যুৎ সরবরাহ তথা যোগাযোগ ব্যবস্থার দ্রুত পুনরুদ্ধারেরও নির্দেশ দেনপ্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদীপরামর্শ দেন যে ক্ষতিগ্রস্ত সড়কগুলির সংস্কার, বিদ্যুৎ পরিকাঠামোর পুনরুদ্ধার এবংস্বাস্থ্য সহায়তার দ্রুত প্রসারের লক্ষ্যেও অবিলম্বে ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন। আমেদাবাদবিমানবন্দরে সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে প্রধানমন্ত্রী বলেনযে গত এক সপ্তাহ ধরে প্রবল বৃষ্টিপাত হয়ে চলেছে গুজরাটে। এই পরিস্থিতিতেবৃহস্পতিবার থেকে ত্রাণ ও উদ্ধার কাজে আরও দশটি হেলিকপ্টার নামানো হচ্ছে। বন্যাপরিস্থিতির মোকাবিলায় রাজ্য সরকার এবং অন্যান্য সকল পক্ষের প্রচেষ্টার বিশেষপ্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। মৃতদেরনিকটাত্মীয়কে ২ লক্ষ টাকা এবং গুরুতরভাবে আহত ব্যক্তিদের ৫০ হাজার টাকা করেএককালীন আর্থিক সহায়তাদানের কথাও ঘোষণা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যগুলিরবিপর্যয় ত্রাণ তহবিল থেকে অনতিবিলম্বে অতিরিক্ত ৫০০ কোটি টাকার সহায়তাদানের কথাওঘোষণা করেন তিনি। রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতির ফলে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায়রাজ্যবাসী যে আরও বেশি শক্তির পরিচয় দেবেন, সে সম্পর্কে তাঁর দৃঢ় আস্থা ওবিশ্বাসের কথাও ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে জানান, তিনি সমবায় যুক্তরাষ্ট্রবাদে বিশ্বাসী। তিনি বরাবরই বলেছেন, শক্তিশালী রাজ্যই ভারতবর্ষকে আরও মজবুত করতে পারে এবং সেজন্যই রাজ্যগুলিকে আরও শক্তিশালী করতে হবে যাতে মানুষের বিকাশের চাহিদা মেটানো যায়। পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতাকে তার নিজের স্বার্থেই উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সামিল হতে হবে, যাতে ঐ অঞ্চলটি উপকৃত হয়। এর জন্য ‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতি রয়েছে। এই অঞ্চলে বহু কর্মদক্ষ মানুষ রয়েছেন, রয়েছে প্রচুর সহায়-সম্পদও। কথা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী জানান, পশ্চিমবঙ্গ তথা কলকাতার উন্নয়নে তিনি বদ্ধপরিকর। এই পরিপ্রেক্ষিতে কেন্দ্রীয় সরকার আগামী পাঁচ বছরে রাজ্যগুলিকে করের আরও ৪২ শতাংশ বিভাজ্য অংশ হিসাবে হস্তান্তরিত করবে বলে মতামত জ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী। কেন্দ্রীয় সরকার রাজস্ব ঘাটতি অনুদান ও অন্যান্য অনুদান-সহ চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ মেনে নিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের অন্যতম বৃহৎ ভোক্তা পশ্চিমবঙ্গ। খ) পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে করের অংশ ৭.২৬৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৭.৩২৪ শতাংশ করা হয়েছে। গ) সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হল, ২০১৫ – ১৬-তে রাজস্ব ঘাটতি অনুদানের পরিমাণ ৮,৪৪৯ কোটি টাকা করা হয়েছে এবং মোট রাজস্ব ঘাটতি অনুদান করা হয়েছে ১১,৭৬০ কোটি টাকা। পশ্চিমবঙ্গ ছাড়াও অন্য দুটি রাজ্য যেখানে এই সুবিধা দেওয়া হচ্ছে সে দুটি হল কেরল এবং অন্ধ্রপ্রদেশ। রাজস্ব ঘাটতি অনুদানের আওতায় ঋণের দরুণ একটি ২ রাজ্যে সুদের বোঝার বিষয়টিও রয়েছে। ২০১৪-১৫-তে এই পরিমাণ ছিল ২৫,৩৪০ কোটি টাকা এবং হিসাবমতো ২০১৫-১৬-তে এটি ৩৮,৪৬১ কোটি টাকায় এসে দাঁড়াবে। চ) ২০১৫ – ১৬-তে পশ্চিমবঙ্গ ৮,৪৪৯ কোটি টাকার রাজস্ব ঘাটতির অনুদান পাচ্ছে। আঞ্চলিক সংস্থাগুলিকে প্রদত্ত অনুদানও দ্বিগুণ করা হয়েছে। ছ) বছরের হিসাবে, আর্থিক হস্তান্তরের পরিমাণ একত্রিত করলে দেখা যাবে ২০১৪ – ১৫-র তুলনায় পশ্চিমবঙ্গের ক্ষেত্রে সহায়সম্পদের পরিমাণ ২০১৫ – ১৬-তে বেড়ে দাঁড়াবে ২২,০০০ কোটি টাকা, অর্থাৎ ৮০ শতাংশ বৃদ্ধি। জ) ঋণ সংক্রান্ত সমস্যা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বোঝা উত্তরাধিকার সূত্রে পাওয়া। কেন্দ্রও উত্তরাধিকারসূত্রে ঋণের বোঝা পেয়েছে। কেন্দ্র – রাজ্য উভয়কেই এই সমস্যার সমাধান যৌথভাবে করতে হবে। চতুর্দশ অর্থ কমিশন রাজ্যগুলির সুদের বোঝা চিহ্নিত করেছে এবং এর ফলে উদ্ভূত রাজস্ব ঘাটতি পুরোপুরিভাবে মিটিয়ে দিয়েছে। এর জন্যই পশ্চিমবঙ্গ অন্যান্য দুটি রাজ্যের সঙ্গে অতিরিক্ত রাজস্ব ঘাটতি অনুদান পাচ্ছে। অতএব, ভবিষ্যতে বিকাশমূলক কার্যকলাপের ক্ষেত্রে সুদের বোঝা কোনও প্রভাব ফেলবে না। চলতি অর্থবর্ষে কেন্দ্রীয় সরকার অতিরিক্ত আর্থিক সহায়সম্পদ প্রদান করবে – এর ফলে রাজ্যের সুদের বোঝার অনেকটাই হাল্কা হবে এবং রাজ্যের বিকাশ ত্বরান্বিত হবে অতিরিক্ত অর্থ প্রদানের প্রেক্ষিতে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার কয়লা ও অন্যান্য খনিজ পদার্থে পশ্চিমবঙ্গকে রয়্যালটি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এরফলে, বছরে রাজ্যের লাভ হবে ১,৬০০ কোটি টাকা। নিলাম হওয়া কয়লা ব্লক থেকে পশ্চিমবঙ্গ ১১,২০০ কোটি টাকা পাবে এবং ভবিষ্যতে আরও বেশি রাজস্ব আয়ের সম্ভাবনা রয়েছে। এই প্রেক্ষিতে, অতীতের তুলনায় পশ্চিমবঙ্গ অপেক্ষাকৃতভাবে উন্নত পরিস্থিতিতে রয়েছে এবং বিকাশমূলক কার্যকলাপ ত্বরান্বিত করার প্রেক্ষিতে পর্যাপ্ত অর্থের অধিকারী। এম.জি.এন.আর.ই.জি.-র অন্তর্গত অর্থ বন্টনের ক্ষেত্রে পশ্চিমবঙ্গ যাতে উপকৃত হয় তার জন্য এই প্রকল্প পুরোপুরিভাবে প্রদানের আশ্বাস জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, এ বছর পশ্চিমবঙ্গ এই খাতে ৩,৭৭৪ কোটি টাকা পেয়েছে, বাকি অর্থ অর্থাৎ ১,৫০০ কোটি টাকা এ মাসেই দিয়ে দেওয়া হবে। পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়নের ক্ষেত্রে সর্বতোভাবে সাহায্যের আশ্বাসের দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। চুক্তি রূপায়ণের জন্য দু’দেশের প্রতিনিধিদের নিয়ে একটি যৌথ কর্মীগোষ্ঠীগড়ে তোলার কথাও বলা হয়েছে মন্ত্রিসভার কাছে পেশ করা প্রস্তাবটিতে। ধনতেরস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেছেন, “আপনাদের সকলকে ধনতেরসের শুভেচ্ছা। প্রধানমন্ত্রীফিফা অনুর্ধ্ব-১৭ ফুটবল বিশ্বকাপেঅংশগ্রহণকারী সমস্ত দলের সদস্যদের শুভেচ্ছা ওস্বাগত জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীবলেছেন – “ফিফা অনুর্ধ্ব-১৭ ফুটবল বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী সমস্ত দলের সদস্যদেরশুভেচ্ছা এবং আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই। সত্যেন্দ্রনাথবসুর কাজের মৌলিক গুরুত্বকে একটি বিষয় থেকে পরিমাপ করা যেতে পারে যে, তাঁর ধারণাকেপদার্থবিদ্যার বিভিন্ন ব্যবহারের ক্ষেত্রে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ায় পরবর্তীকালে বেশকিছুগবেষককে নোবেল পুরস্কার প্রদান করা হয়েছে| আমিব্যবহারিক ও গবেষণা পরিকাঠামোর আরও বেশি আদান-প্রদানের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছি,যেগুলো অনেক বেশি ব্যয়বহুল ও সংক্ষিপ্ত জীবনকালের| শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এবং গবেষণা ও উন্নয়ন (আর. এন্ড ডি.) প্রতিষ্ঠানের মধ্যে শক্তিশালীসমন্বয়ের জন্য একটি পদ্ধতি নিয়ে আসা হচ্ছে| শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে অন্য প্রতিষ্ঠানএবং শিল্প থেকে শুরু করে স্টার্ট-আপ পর্যন্ত সমস্ত ক্ষেত্রের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিসহযোগীদের একসঙ্গে নিয়ে আসার জন্য শহর ভিত্তিক আর. এন্ড ডি. ক্লাস্টার তৈরি করাহচ্ছে| আমিআপনাদের সবাইকে এক পরিপূরক ও সৃজনশীল নববর্ষের শুভেচ্ছা জানাচ্ছি| মেঘালয়, মণিপুর ও ত্রিপুরা – এই তিনটি রাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “রাজ্য হিসেবে মেঘালয়, মণিপুর ও ত্রিপুরার প্রতিষ্ঠা দিবসে রাজ্যবাসীদের আমার অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার পয়লা অক্টোবরনতুন দিল্লিতে ব্রিক্‌স গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির জন্য অনুর্ধ্ব-১৭ ফুটবল প্রতিযোগিতারউদ্বোধন করলেন। জাতীয় যুবদিবস উপলক্ষে আয়োজিত দুটি বিশেষ অনুষ্ঠানে আজ ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বক্তব্যরাখলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। গ্রেটারনয়ডার গৌতম বুদ্ধ বিশ্ববিদ্যালয়ে জাতীয় যুব উৎসব, ২০১৮-র উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেপ্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যের সূচনা করেন পিএসএলভি সি-৪০-র সফল উৎক্ষেপণেইসরো-রবিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জ্ঞাপনের মাধ্যমে। ২০১৭-রডিসেম্বরে তাঁর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ঐঅনুষ্ঠানে তিনি এক নকল সংসদ আয়োজনের আহ্বান জানিয়েছিলেন। এই ধরনের কর্মসূচির মধ্যদিয়ে দেশের যুব সমাজের মধ্যে আলোচনা ও মতবিনিময়ের কাজকে উৎসাহ দেওয়া সম্ভব বলে মনেকরেন তিনি। তবে, দেশেরস্বাধীনতার জন্য যাঁরা তাঁদের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন, তাঁদের স্বপ্নকে সফল করেতোলার সুযোগ রয়েছে আমাদের কাছে। তাই, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্নের ভারত গড়েতুলতে আমাদের সকলকেই প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে হবে। শ্রী মোদীবলেন, আমরা দেশের যুব সমাজকে কর্মদাতা রূপে গড়ে তুলতে আগ্রহী। কারণ, উদ্ভাবনেরকাজে যুক্ত রয়েছেন দেশের তরুণ ও যুবকরাই। অনেকেই হয়তো বলে থাকেন যে বর্তমান যুবসমাজের ধৈর্য্যের বড় অভাব। কিন্তু এই ধরনের মানসিকতা আবার অন্যদিক থেকে দেশের তরুণও যুবকদের মধ্যে উদ্ভাবনের আগ্রহ ও উৎসাহ জাগিয়ে তুলতে পারে। নির্দিষ্ট গণ্ডিরমধ্যে আবদ্ধ না থেকে নতুন কিছু উদ্ভাবন করার বিষয় সম্পর্কে তাঁদের কাছেচিন্তাভাবনার সুযোগ এনে দেয় এই ধরনের উক্তি ও মানসিকতা। খেলাধূলাকে জীবনের একটিঅঙ্গ হিসেবে গ্রহণ করার জন্য তরুণ ও যুবকদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানানপ্রধানমন্ত্রী। কর্ণাটকেরবেলাগাভিতে জাতীয় যুব দিবস এবং সর্ব ধর্ম সভা উপলক্ষে আয়োজিত এক কর্মসূচিতে ভিডিওকনফারেন্সের মাধ্যমে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সৌভ্রাতৃত্ব গড়ে তোলার ওপরবিশেষ জোর দিতেন স্বামী বিবেকানন্দ। তিনি বিশ্বাস করতেন যে ভারতের উন্নয়নের মধ্যেইনিহিত রয়েছে আমাদের সকলের কল্যাণ। শ্রীনরেন্দ্র মোদী বলেন, পাশ্চাত্য জগতে স্বামী বিবেকানন্দ সম্পর্কে অনেক অপপ্রচারহয়েছে।বলা হয়েছে যে তিনি ছিলেন এক ভ্রান্ত পথের পথিক। কিন্তু আমাদের বিস্মৃত হলেচলবে না যে সামাজিক কুফলগুলির বিরুদ্ধেও সোচ্চার হয়েছিলেন স্বামীজি। প্রধানমন্ত্রীবলেন, সমগ্র জাতি, বিশেষ করে যুব সমাজকে বিচ্ছিন্ন করতে কোন কোন শক্তি চেষ্টা করেচলেছে। কিন্তু আমাদের যুবশক্তি কখনই বিপথচালিত হবে না বলে তিনি মনে করেন। দেশেরতরুণ ও যুব সমাজই যে ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’কে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেছে একথাও তাঁরভাষণে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারত হল সাধু-সন্তদের দেশ যাঁরাসমাজকে সেবা করে গেছেন এবং সমাজ সংস্কারেও ব্রতী থেকেছেন। শ্রী মোদীস্মরণ করিয়ে দেন যে ‘সেবা ভবঃ’ আমাদের সংস্কৃতিরই এক বিশেষ অঙ্গ। ‘মুদ্রা’যোজনার ১০০ জন সুফলভোগীর সঙ্গে আগামীকাল রাজধানীর এক অনুষ্ঠানে আলাপচারিতায় মিলিতহবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই কর্মসূচির আওতায় এ পর্যন্ত মোট ঋণদানের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ২,২০,৫৯৬কোটি টাকা। প্রসঙ্গতউল্লেখ্য, কর্পোরেটের আওতার বাইরে ক্ষুদ্র বাণিজ্যিক প্রচেষ্টার প্রসারের লক্ষ্যেএই কর্মসূচির সূচনা হয় ২০১৫-র ৮ এপ্রিল তারিখে। এর আওতায় শিশু, কিশোর ও তরুণ – এইতিনটি পর্যায়ে সুলভ ঋণদানের সংস্থান রয়েছে। আয়ও উপার্জন বৃদ্ধির কাজে সহায়তাদানের লক্ষ্যে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ‘মুদ্রা’ ঋণদেওয়া হয় এই কর্মসূচির আওতায়। ধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে সাইবার নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ভারত ও মরক্কোর মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্র সম্পর্কে জানানো হয়। ২০১৮র ২৫ সেপ্টেম্বর সমঝোতাপত্রটি স্বাক্ষরিত হয়। নিরাপত্তা সংক্রান্ত ঘটনাবলী শনাক্ত করার জন্য জ্ঞান এবং অভিজ্ঞতা বিনিময়ের প্রয়াসে সমঝোতাপত্রটি দু-দেশের পক্ষেই সহায়ক হবে। লোকনায়কজয়প্রকাশ নারায়ণের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ” লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণেরজন্মবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি জানাই প্রণাম । দেশের গণতান্ত্রিক আদর্শ রক্ষায় তাঁর অবদান চিরস্মরণীয়। ” প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ ভারতীয় ডাক ওটেলিযোগাযোগ অ্যাকাউন্টস ও ফিনান্স সার্ভিস (আই পি অ্যান্ড টি এ এফ এস)-এর প্রথমশ্রেণীর জন্য প্রথম ক্যাডার পর্যালোচনার বিষয়টি অনুমোদন করল নিন্মলিখিত বৈশিষ্ট্যসহ :- ক) ক্যাডারের মোট কর্মীর সংখ্যা ৪২০ থেকে কমিয়ে ৩৭৬-এ আনা হবে। খ) শীর্ষ স্থানীয় কন্ট্রোলার জেনারেল অফ কমিউনিকেশন অ্যাকাউন্টস (সি জি সিএ) একটি শীর্ষ স্থানীয় পদ গড়ে তোলা। গ) একটি অতিরিক্ত এইচ এ জি পর্যায়ে পদ সৃষ্টির মাধ্যমে ঐ গ্রেডের পদ সংখ্যাবাড়িয়ে ২-এ নিয়ে যাওয়া। ঘ) দুটি অতিরিক্ত এইচ এ জি পর্যায়ের পদ সৃষ্টি করে ঐ পর্যায়ের পদ সংখ্যাবাড়িয়ে ৬ থেকে ৮ – এ নিয়ে যাওয়া। ঙ) ১৮টি অতিরিক্ত এস এ জি পর্যায়ের পদ সৃষ্টি করে এই পর্যায়ের পদ সংখ্যা ৩৭থেকে ৫৫’তে নিয়ে যাওয়া। চ) জুনিয়ার প্রশাসনিক গ্রেড জে এ জি’র পদ সংখ্যা ১১১ থেকে কমিয়ে ৯০ – এআনা। ছ) এস টি এস পর্যায়ের পদ সংখ্যা ১৯৮ থেকে ৮৬’তে নিয়ে যাওয়া। জ) জে টি এস পর্যায়ের ২১টি পদ সৃষ্টি করে ঐ পর্যায়ের পদ সংখ্যা ৬৭ থেকেবাড়িয়ে ৮৮’তে নিয়ে যাওয়া। এইসব কাজের পরিধি যেমন বেড়েছে, তেমনই আরও নানা ধরনের কাজও যুক্তহয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এক অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত ব্যঙ্গ চিত্র শিল্পী আর কে লক্ষ্মণ’কে নিয়ে রচিত ছোট পুস্তিকা ‘টাইমলেস লক্ষ্মণ’ আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অন্তহীন লক্ষ্মণের মতো ‘অন্তহীন যাত্রার’ অঙ্গ হয়ে উঠতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত বোধ করছেন। ‘টাইমলেস লক্ষ্মণ’ বইটিতে ব্যঙ্গ চিত্র শিল্পী লক্ষ্মণের সমৃদ্ধ সৃষ্টিশীলতার ওপর আলোকপাত করা হয়েছে বলেও তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কয়েক দশক ধরে লক্ষ্মণের সৃষ্টিশীলতার প্রতি বিচার-বিশ্লেষণ বর্তমান সময়ের সমাজ বিজ্ঞান ও আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতিকে বুঝতে সাহায্য করে। এ ধরণের বই প্রকাশ কেবলমাত্র লক্ষ্মণ বা তাঁর স্মৃতির উদ্দেশ্যেই নয়, কোটি কোটি মানুষের মনে লক্ষ্মণ এখনও জীবিত রয়েছেন, এটি তারই একটি প্রয়াস মাত্র। প্রধানমন্ত্রী বলেন, লক্ষ্মণের সাধারণ মানুষ অন্তহীন এবং ভূ-ভারত জুড়ে তাঁর প্রভাব প্রসারিত। সমস্ত ভারতীয় এবং সকল প্রজন্মের মানুষ লক্ষ্মণের মধ্যে নিজেকে খুঁজে পান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার (পয়লা সেপ্টেম্বর) নতুন দিল্লীর তালকাটোরা স্টেডিয়ামে ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস ব্যাঙ্কের সূচনা করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় ডাকবিভাগের পেমেন্টস ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা দেশের প্রত্যন্ত ও দূরবর্তী এলাকাগুলিতে বসবাসকারী মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের জন ধন যোজনা চালু করার কথাও স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ভারতীয় ডাক বিভাগের এই ব্যাঙ্ক আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের লক্ষ্য পূরণে আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দেশের ৬৫০টি জেলায় আজ থেকেই ভারতীয় ডাক বিভাগের পেমেন্টস ব্যাঙ্কের শাখাও চালু হল বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডাক-পিয়নরা গ্রামে দীর্ঘ সময় শ্রদ্ধা পেয়ে এসেছেন এবং গ্রামের মানুষরা তাঁদেরকে স্বীকৃতিও দিয়েছেন। তিনি আরও বলেন, আধুনিক প্রযুক্তি আবির্ভাব সত্ত্বেও ডাক-পিয়নদের প্রতি আস্থা একই রয়েছে। তাই, গ্রামীণ ডাক সেবকদের আরও অধিক ক্ষমতা প্রদান করে আর্থিক পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে তাঁদেরকে স্মার্ট ফোন ও ডিজিটাল প্রযুক্তিসম্পন্ন বৈদ্যুতিন উপকরণ দেওয়া হবে। ভারতীয় ডাক বিভাগের পেমেন্টস ব্যাঙ্কের বিভিন্ন উপকারিতার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে আর্থিক লেনদেন, সরকারি সুবিধা হস্তান্তর, বিল প্রদান সহ বিনিয়োগ ও বিমার মতো অন্যান্য পরিষেবাও মিলবে। তিনি বলেন, এই সমস্ত পরিষেবাগুলি ডাক-পিয়নরা সাধারণ মানুষের দোরগোড়ায় পৌঁছে দেবেন। ভারতীয় ডাক বিভাগের এই ব্যাঙ্কের মাধ্যমে ডিজিটাল লেনদেনের পাশাপাশি কৃষকদের সহায়তাদানকারী ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’র মতো প্রকল্পগুলির যাবতীয় সুযোগ-সুবিধাও পাওয়া যাবে। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, ২০১৪ সাল থেকে বিভেদমূলক ঋণ প্রদানের দরুণ ভারতের ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রে যে জটিলতা ও সমস্যা তৈরি হয়েছে, কেন্দ্রীয় সরকার তা কড়া হাতে মোকাবিলা করে আসছে। তিনি আরও জানান, প্রদেয় ঋণের এই পরিস্থিতি সরকার পর্যালোচনা করে দেখেছে এবং ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত এই জটিলতা দূর করতে পেশাদারী মনোভাব গ্রহণ করেছে। ঋণ খেলাপিরা যাতে উপযুক্ত শাস্তি পায় তা সুনিশ্চিত করতে পলাতক অর্থনৈতিক অপরাধী বিল-এর মতো আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্বনিযুক্তির সুযোগ-সুবিধা গড়ে তুলতে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষকে ‘মুদ্রা’ যোজনার মাধ্যমে ১৩ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে। সাধারণ মানুষের সমবেত প্রচেষ্টার ফলে এই সাফল্য পাওয়া গেছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত এখন বিশ্বে দ্রুততম বিকাশশীল অর্থনীতিই নয়, বরং দ্রুততার সঙ্গে দারিদ্র্য দূরীকরণের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ৩ লক্ষ ডাক সেবক গ্রামগুলিতে প্রতিটি বাড়িতে, প্রত্যেক কৃষকের কাছে এবং প্রতিটি ক্ষুদ্র শিল্পে আর্থিক পরিষেবা প্রদানে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। ভারতে ভক্তিআন্দোলনের সময়ের বড় দার্শনিকদের মধ্যে অন্যতম জগদ্‌গুরু সন্ত শ্রী মাধবাচার্যেরসপ্তম শতবার্ষিকী সমারোহ উপলক্ষে বক্তব্য রাখতে পেরে আমি অভিভূত। কাজের ব্যস্ততারকারণে আমি উড়ুপি পৌঁছতে পারিনি। একটু আগেই আলিগড় থেকে ফিরেছি। এতে আমার পরমসৌভাগ্য যে আজ আপনাদের সবার আশীর্বাদ গ্রহণ করার সুযোগ পেয়েছি। মানবজাতির নৈতিকএবং আধ্যাত্মিক উত্থানের জন্য শ্রী মাধবাচার্যের বাণী যেভাবে প্রচার-প্রসার করাহচ্ছে সেজন্য আমি সকল আচার্য ও মণীষীদের অভিনন্দন জানাই। কর্ণাটকের পূণ্যভূমিকেও আমি প্রণাম জানাই যেখানে একজন মাধবাচার্যের মতো সাধু জন্মগ্রহণ করেছিলেন।আচার্য শঙ্কর এবং আচার্য রামানুজের মতো পূণ্যাত্মাদের বিশেষ স্নেহের পাত্র ছিলেনতিনি। উড়ুপি শ্রীমাধবাচার্যের জন্মভূমি এবং কর্মভূমি ছিল। তিনি তাঁর প্রসিদ্ধ গীতাভাষ্য এই উড়ুপিরপবিত্র ভূমিতেই বসে লিখেছিলেন। শ্রী মাধবাচার্যওখানকার কৃষ্ণ মন্দিরেরও প্রতিষ্ঠাতা। ঐ মন্দিরে স্থাপিত কৃষ্ণ মূর্তির সঙ্গে আমারএকটি বিশেষ সম্পর্ক রয়েছে। উড়ুপির সঙ্গেও আমার একটি আলাদা সম্পর্ক রয়েছে। আমিকয়েকবার উড়ুপি যাওয়ার সুযোগ পেয়েছি। ১৯৬৮ থেকে শুরু করে চার দশক ধরে উড়ুপিমিউনিসিপ্যাল কর্পোরেশনের দায়িত্ব নির্বাহ করেছে ভারতীয় জনসঙ্ঘ এবং ভারতীয় জনতাপার্টি। ১৯৬৮-তে উড়ুপি পৌরসভাতেই প্রথম হাতে ঝাড়া-মোছার কাজ বন্ধ করা হয়েছিল। এই অনুষ্ঠানে শ্রীবিশ্বেশতীর্থ স্বামীজি নিজে উপস্থিত থাকায় আমার আনন্দ দ্বিগুণ হয়েছে। মাত্র আট বছরবয়সেই সন্ন্যাস গ্রহণ করে তিনি বিগত ৮০ বছর ধরে দেশ ও সমাজকে মজবুত করার কাজ করেযাচ্ছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে গিয়ে অশিক্ষা, গো-রক্ষা এবং জাতিবাদের বিরুদ্ধেলড়াই জারি রেখেছেন। এই স্বামীজির পূণ্য কর্মের প্রভাবেই তিনি তাঁর জীবনের পঞ্চমপর্যায়ে অবসর গ্রহণ করেছেন। এহেন সন্ন্যাসী পুরুষকে আমি প্রণাম জানাই। আমাদের দেশেরইতিহাস হাজার হাজার বছর পুরনো। হাজার বছরের ইতিহাসকে জড়িয়ে আমাদের দেশে সময়েরপ্রয়োজন অনুসারে পরিবর্তন সাধিত হয়েছে। ব্যক্তি চরিত্রে পরিবর্তন, সমাজ চরিত্রেপরিবর্তন। কিন্তু সময়ের সঙ্গে মাঝে-মধ্যেই কিছু কুসংস্কারও সমাজে প্রভাব বিস্তারকরে। কিন্তু আমাদেরসমাজের বৈশিষ্ট্য হল, যখনই সমাজ নানাভাবে কুসংস্কারাচ্ছন্ন হয়েছে, তার সংস্কারেরকাজও সমাজের মধ্য থেকেই শুরু হয়েছে। একটা সময় এমন এসেছিল, যখন এই সংস্কারেরনেতৃত্ব আমাদের দেশে সাধু-সন্ন্যাসীরাই দিয়েছেন। এটা ভারতীয় সমাজের অদ্ভুত ক্ষমতাযে যুগে যুগে আমরা দেবতুল্য মহাপুরুষদের পেয়েছি যাঁরা ঐ কুসংস্কারগুলিকে চিহ্নিতকরেছেন এবং সেগুলি থেকে মুক্তির রাস্তা দেখিয়েছেন। অনেক প্রচলিতকু-রীতির বিরুদ্ধে তিনি প্রতিবাদ জানিয়েছেন, সমাজকে নতুন পথ দেখিয়েছেন। যজ্ঞেপশুবলী বন্ধ করানোর সংস্কার তিনিই চালু করেছিলেন। এই ভক্তিআন্দোলন দক্ষিণ ভারত থেকে শুরু করে মহারাষ্ট্র এবং গুজরাট হয়ে উত্তর ভারত পর্যন্তপৌঁছে গিয়েছিল। সেই ভক্তিযুগেরকালখণ্ডে ভারতের সকল প্রান্তে সকল ভাষাভাষী মানুষদের সচেতন করতে সাধু-সন্ন্যাসীরামন্দির, মঠগুলি থেকে পথে বেরিয়ে এসেছিলেন। এই ভক্তিআন্দোলনদকে দক্ষিণ ভারত থেকে মাধবাচার্য, নিম্বার্কাচার্য, বল্লভাচার্য,রামানুজাচার্য, পশ্চিম ভারত থেকে রাবাই, একনাথ, তুকারাম, রামদাস, নরসি মেহতা,উত্তর ভারত থেকে রামানন্দ, কবীর দাস, গোস্বামী তুলসীদাস, সুরদাস, গুরু নানক দেবএবং রবিদাস, পূর্ব ভারত থেকে চৈতন্য মহাপ্রভু এবং শঙ্কর দেবের মতো সন্ন্যাসীরা দেশেরমানুষকে সচেতন করে তুলেছিলেন। এই সাধু-মহাপুরুষদের সংস্কার আন্দোলনের প্রভাবেই সকলবিপত্তি অতিক্রম করে ভারত সেই অন্ধকার যুগ পেরিয়ে আসতে পারেছিল, নিজেকে বাঁচাতেপেরেছিল। তিনিও জাতির সীমাথেকে ওপরে উঠে ঈশ্বর প্রাপ্তির পথ দেখিয়েছেন। তিনি বলতেন, কর্ম,জ্ঞান এবং ভক্তির মাধ্যমেই ঈশ্বর লাভ করা যায়। তাঁর প্রদর্শিত পথেই সন্ত রামানন্দসকল জাতি ও ধর্মের মানুষকে নিজের শিষ্য বানিয়ে জাতিবাদকে কড়া প্রহার করেছিলেন। সন্ত কবীরওজাতিপ্রথা থেকে সমাজকে মুক্তি দেওয়ার অদম্য চেষ্টা চালিয়ে গেছেন। গুরু নানক দেববলতেন, “মানব কি জাত সভো এক পহচানবো …”। সন্ত বল্লভাচার্যস্নেহ ও ভালোবাসার পথকেই মুক্তির পথ বলে চিহ্নিত করেছেন। চৈতন্য মহাপ্রভুঅস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধে সমাজকে নতুন পথ দেখিয়েছিলেন। সাধু-সন্ন্যাসীদেরএই পরম্পরা ভারতের জীবন্ত সমাজেরই প্রতিবিম্ব, পরিণাম। সমাজ যত প্রতিস্পর্ধারসম্মুখীন হয়, তার যাত্রাপথও ততই উত্তর-আধ্যাত্মিক রূপে প্রকট হয়। সেজন্যই, গোটাদেশে সম্ভবত এমন খুব কম জেলা রয়েছে যেখানে সময়ের প্রয়োজনে এমন কোনও সাধু মহাপুরুষজন্মগ্রহণ করেননি। তাঁরাই ভারতীয় সমাজের যন্ত্রণা নিরসনের কাজ করে গেছেন। নিজেদেরজীবন, উপদেশ এবং সাহিত্যের মাধ্যমে তাঁরা সমাজ সংস্কারের কাজ করে গেছেন। ভক্তি আন্দোলনেরসময় ধর্ম, দর্শন এবং সাহিত্যের এমন এক ত্রিবেণী স্থাপিত হয়েছিল যা আজও আমাদেরপ্রেরণা যোগায়। মানুষের জীবনে কর্ম, আচার-আচরণের মাহাত্যকে আমাদেরসাধু-সন্ন্যাসীরা সবার ওপরে স্থান দিয়েছেন। আজ যখন দেশে কালো টাকা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে এত বড় লড়াই শুরুহয়েছে, তখন তাঁর এই ভাবনা কত প্রাসঙ্গিক অনুভূত হয়! শ্রী মাধবাচার্যসবসময় বলতেন যে কোন কাজ ছোট বা বড় হয় না। ঐকান্তিকভাবে নিষ্ঠা সহকারে যে কাজ করাহয়, তা ঈশ্বরের পুজোর মতো। তিনি বলতেন, আমরা যেমন সরকারকে কর দিই, তেমনই মানবতারসেবাই ঈশ্বরকে দেওয়া করের সমতুল। আমরা গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, ভারতে এই ধরনের মহানঐতিহ্য রয়েছে। এত মহান সাধু-সন্ন্যাসীরা ছিলেন, যাঁরা তাঁদের তপস্যা ও জ্ঞানেরমাধ্যমে দেশের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য, রাষ্ট্র নির্মাণের জন্য সারা জীবন কাজ করেগেছেন। এই মহাপুরুষরা দেশকে অদ্ভুত, অতুলনীয় শক্তিপ্রদান করেছেন। সামাজিককুপ্রথাগুলির বিরুদ্ধে আমাদের মহান সাধু-সন্ন্যাসীরা প্রতিনিয়ত লড়াই করে গেছেন বলেআমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য প্রতিনিয়তই পুনর্নবীকৃত হয়েছে। এই মহান সন্ন্যাসীপরম্পরার কারণেই আমরা জাতীয় ঐক্য এবং রাষ্ট্র নির্মাণের ভাবনাকে সাকার করতেপেরেছি। তাঁরা আমাদের সমাজকে সকল ধর্মের ওপরে মানব ধর্মকেপ্রতিস্থাপিত করার প্রেরণা যুগিয়েছেন। আজও আমাদের দেশ,আমাদের সমাজের সামনে এই সমস্যাগুলি রয়েছে। আর এগুলির বিরুদ্ধে আজওসাধু-সন্ন্যাসীরা তাঁদের লড়াই জারি রেখেছেন। আজ তাঁরা সমাজকে বলছেন যে‘পরিচ্ছন্নতাই ঈশ্বর’। তাঁদের এই বাণী সরকারের যে কোন অভিযানের থেকে বেশি প্রভাবশালী।আর্থিক শুচিতার প্রেরণাও আমরা এই সাধুদের কাছ থেকে পাই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়েনেতৃত্ব আজকের আধুনিক সন্ন্যাসী সমাজই দিতে পারেন। পরিবেশ রক্ষারক্ষেত্রেও সন্ন্যাসী সমাজের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। আমাদের সংস্কৃতিতে যুগ যুগধরে বৃক্ষে চেতন এবং জীবনকে মেনে নেওয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে ভারতেরই এক সুসন্তানমহান বৈজ্ঞানিক ডঃ জগদীশ চন্দ্র বোস বিশ্বের সামনে বৈজ্ঞানিক উপায়ে এই সত্যকেপ্রতিষ্ঠিত করেছেন। তার আগে, বিশ্ব আমাদের এই ধারণা নিয়ে হাসি-ঠাট্টা করত। বিশ্বের সকল সমস্যারসমাধান ভারতীয় সংস্কৃতিতে রয়েছে। এই দেশে সহজভাবেই এক ঈশ্বরকে নানা রূপে পুজো করাহয়। কিন্তু ভারতকেবলই সিদ্ধান্ত রূপে নয়, ব্যবহারেও শতাব্দীর পর শতাব্দীকাল ধরে নানা প্রকারউপাসনার সহাবস্থানকে মেনে নিয়েছে। আমরা “সর্বপন্থ সমভাব” নীতি অনুসরণ করি। অশিক্ষা, অজ্ঞানতা, অপুষ্টি, কালো টাকা,দুর্নীতির মতো যে বদ গুণগুলি ভারত মাতাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দী করে রেখেছে সেগুলিরহাত থেকে তাকে মুক্তি দেওয়ার পথও সাধু-সন্ন্যাসীরাই আমাদের সমাজকে দেখাচ্ছেন। আমি প্রার্থনা করি,আপনাদের সকলের প্রচেষ্টায় দেশের প্রতিটি মানুষ প্রাণশক্তিকে অনুভব করবে। “বয়মঅমৃতস্য পূত্রাহা” – আমরা সকলেই অমৃতের সন্তান! এই অনুভব আমাদের জনশক্তিকে আরওমজবুত করতে থাকবে এটুকু বলেই আমি আপনাদের সকলকে কৃতজ্ঞতা জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ। একটি জনসভাতেও ভাষণ দেব আমি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি কিম জং সু-র সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। ফার্স্ট লেডি কিম সিওল শান্তি পুরস্কার জয়ের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সম্মান ভারতের জনগণের। এমনকি, এই কর্মসূচিটি বিদেশে কর্মরত ভারতীয় বিজ্ঞানীদের দেশে ফিরে এসে কাজ করতে উৎসাহ যুগিয়েছে, সেইসঙ্গে দেশে বায়োমেডিকেল সংক্রান্ত গবেষণার ক্ষেত্রে ভারতে বিশ্বমানের পরিকাঠামো ও পরীক্ষাগারের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। কর্মসূচিটির সম্প্রসারিত মেয়াদকালে একইভাবে বিশ্বমানের মেধাকে কাজে লাগানোর পাশাপাশি, ভারতে স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সমস্যাগুলি দূর করার লক্ষ্যে এবং চিকিৎসা গবেষণা পরিকাঠামো আরও সুদৃঢ় করার ওপর অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। “দিল্লির করোল বাগে যে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনা ঘটেছে সেখানে বহু মানুষের জীবনহানি ঘটায় আমি দুঃখিত। নিহতদের পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা জানাই। এই ঘটনায় আহত ব্যক্তিদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি।” পঠনপাঠনের মাস -এরসূচনা উপলক্ষে আজ এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। এর উদ্যোগ আয়োজনের জন্য আমার অভিনন্দন পি এন পানিকর ফাইন্ডেশনকে। সাক্ষরতারদিক থেকে কেরল শুধুমাত্র পথিকৃৎই নয়, সমগ্র জাতির প্রেরণার উৎসও। দেশের প্রথম১০০ শতাংশ ‘সাক্ষর নগরী’ এবং ১০০ শতাংশ ‘সাক্ষর জেলা’ অবস্থিত কেরলেই । প্রাথমিক শিক্ষার ক্ষেত্রেও ১০০ শতাংশসাফল্য অর্জন করেছে এই রাজ্যটি। দেশের বেশ কয়েকটি প্রাচীনতম স্কুল, কলেজ ওগ্রন্থাগার অবস্থিত কেরলে । ১৯৪৫ সালে ৪৭টি গ্রামীণ পাঠাগারকে সঙ্গে নিয়ে তিনি এই কাজসম্ভব করে তুলেছিলেন কেরল গ্রন্থশালা সঙ্ঘের মাধ্যমে। আমি বিশ্বাসকরি যে অধ্যয়ন বা পাঠ করার অভ্যাস এবং জ্ঞানের পিপাসা শুধুমাত্র কর্মজগতের মধ্যেইসীমাবদ্ধ নয়। দেশের ঐক্য ও সংহতির প্রতি সম্ভ্রমবোধের পাশাপাশি,শান্তির বার্তারও তা প্রসার ঘটায়। কথিত আছে যেএকজন সাক্ষর নারী দুটি পরিবারকে শিক্ষিত করে তুলতে পারেন। কেরল এক্ষেত্রেনিঃসন্দেহে এক বিশেষ যোগ্যতার অধিকারী। পি এন পানিকরফাউন্ডেশন যে বিভিন্ন সরকারি সংস্থা, বেসরকারি প্রতিষ্ঠান এবং সুশীল সমাজের বিভিন্নসংস্থাকে সঙ্গে নিয়ে পঠনপাঠন তথা অধ্যয়নের অভ্যাস গড়ে তোলার বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণকরেছে, সেকথাও আমার অজানা নয়। তাদেরলক্ষ্য হল, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ৩০ কোটি অনগ্রসর মানুষকে এই ব্যবস্থার আওতায়নিয়ে আসা। এই কর্মসূচির মূল উদ্দেশ্য হল উন্নতি ও সমৃদ্ধির একটি মাধ্যম হিসেবেপঠনপাঠনের অভ্যাসকে গড়ে তোলা। পড়াশোনারঅভ্যাস থাকলে তা মানুষের চিন্তার জগতের আরও প্রসার ঘটায় । দেশের শিক্ষিত জনসংখ্যা ভারতকে পৌঁছেদিতে পারে বিশ্ব উৎকর্ষের এক বিশেষ স্থানে । গুজরাটেরমুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সমান উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে আমি সূচনা করেছিলাম ‘ভঞ্চেগুজরাট’ নামে এই ধরনের একটি আন্দোলনের। আন্দোলনের মূল লক্ষ্য ছিল বিশেষতঃ, রাজ্যের তরুণ প্রজন্ম। কাউকে উপহারহিসেবে পুষ্পস্তবক না দিয়ে একটি বই উপহার দেওয়ার জন্য আমি আবেদন জানিয়েছিলামসাধারণ মানুষের কাছে। কারণ, আমি জানি যে এই ধরনের প্রচেষ্টা অনেক কিছুই সম্ভব করেতুলতে পারে। আমরা লক্ষ্যকরেছি যে উপনিষদের সময়কাল থেকে শুরু করে সকল যুগেই শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রম লাভ করেএসেছেন জ্ঞান ও প্রজ্ঞার অধিকারীরা। বর্তমানে আমরা বাস করছি তথ্যের যুগে। তাই আজওজ্ঞানই হল আমাদের আলোর দিশারী। নয়াদিল্লিরইন্ডিয়ান পাবলিক লাইব্রেরি মুভমেন্টের সঙ্গে সহযোগিতাক্রমে ১৮টি সাধারণগ্রন্থাগারকে সঙ্গে নিয়ে ডিজিটাল পাঠাগার গড়ে তোলার এক বড় ধরনের কাজে এগিয়ে এসেছেপানিকর ফাউন্ডেশন। এই ধরনেরইপঠনপাঠন তথা পাঠাগার আন্দোলন আমি দেখতে চাই সারা দেশেই। শুধুমাত্র জনসাধারণকেসাক্ষর করে তোলার মাধ্যমেই আন্দোলনের কাজ সীমাবদ্ধ থাকবে না। আর্থ-সামাজিক রূপান্তরঘটানোর সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছনোর জন্যও তাকে চেষ্টা করে যেতে হবে। এইভাবেই,জ্ঞান ও প্রজ্ঞার ভিত্তিকে অনুসরণ করে গড়ে উঠবে উন্নততর সমাজের বিশেষ কাঠামোটি। আমি একথাজেনে খুবই আনন্দিত যে ১৯ জুন তারিখটিকে রাজ্য সরকার ‘অধ্যয়ন দিবস’ রূপে ঘোষণাকরেছে। এই কাজটিকে জনপ্রিয় করে তুলতে স্পষ্টতই বিভিন্ন ধরনের প্রচেষ্টা চালানোহবে। ফাউন্ডেশনেরকর্মপ্রচেষ্টায় সাহায্য ও সমর্থন নিয়ে এগিয়ে এসেছে কেন্দ্রীয় সরকারও। গত দু’বছরেএজন্য ফাউন্ডেশনকে দেওয়া হয়েছে ১.২০ কোটি টাকা। বর্তমানেফাউন্ডেশন ডিজিটাল সাক্ষরতার ওপর বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছে একথাও আমার কাছে খুবইআনন্দের বিষয়। কারণ আমি মনে করি যে এর বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে এই মুহূর্তে। জনসাধারণেরশক্তি বা ক্ষমতায় আমি বিশ্বাসী। কারণ আমি মনে করি যে এক উন্নততর সমাজ তথা দেশ গড়েতোলার যথেষ্ট ক্ষমতা নিহিত রয়েছে তাঁদের এই শক্তির মধ্যে। আজ এখানেশ্রোতা ও দর্শকদের মধ্যে উপস্থিত নবীন প্রজন্মের প্রত্যেককেই আমি আর্জি জানাবপঠনপাঠনের অভ্যাস গড়ে তোলার সঙ্কল্প গ্রহণের জন্য। প্রত্যেক মানুষকেই এই কাজেউদ্বুদ্ধ করার অঙ্গীকার গ্রহণ করতে হবে। তিনি বলেছেন যে জিস্যাট-৬এ হলএকটি যোগাযোগ উপগ্রহ যা মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনের নতুন নতুন সম্ভাবনার সুযোগ অন্বেষণকরবে। ব্রিটিশপ্রধানমন্ত্রী মিসেস টেরেসা মে বৃহস্পতিবার টেলিফোনে কথা বলেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। সদ্য সমাপ্ত দেওয়ালি উৎসব উপলক্ষেদু’জনেই পরস্পরের সঙ্গে শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। আমার বক্তব্যের শুরুতেই আমি বলেছি, রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের পুনর্গঠন বিশ্বের সর্বজনীন স্বার্থে দরকার এবং আরো সর্বব্যাপী ও সমতাপূর্ণ এক পৃথিবীর জন্য তা করা অত্যন্ত প্রয়োজন| আমি আগেই বলেছি, সাধারণ পরিষদের সভাপতি যে খসড়া উত্থাপন করেছেন, সাধারণ পরিষদের ৭০ তম অধিবেশনে আলোচ্য বিষয় হিসেবে ও আলোচনার উপসংহারে উপনীত হওয়ার জন্য একেই ভিত্তি করতে ওই খসড়াকে আমাদের শীঘ্র প্রনয়ন করা উচিত | নৌবাহিনীর জাহাজগুলি স্বাস্থ্য শিবির হিসাবে কাজ করে দ্বীপরাষ্ট্রগুলিতে স্বাস্থ্য পরিষেবায় সাহায্য করতে পারে। কেবলমাত্র মহাকাশ ও সমুদ্রের সাথেই নয়, দুদেশের মধ্যে গভীর সম্পর্কের সাথে জড়িয়ে রয়েছে আমাদের ভবিতব্য। মহাকাশ প্রযুক্তি আমাদের ভূ-সম্পদ ও জল সম্পদের ভান্ডার – মৎসাঞ্চল, বন সম্পদ ব্যবস্থাপনা, জলবায়ু ও আবহাওয়া পরিবর্তন, বিপর্যয় মোকাবিলায় সহায়তা – খুঁজে বের করতে সহায়ক হতে পারে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় রাষ্ট্রপুঞ্জের কোন একটি দ্বীপে সমগ্র অঞ্চলের জন্য ‘মহাকাশ প্রযুক্তি প্রয়োক কেন্দ্র’ গড়ে তুলতে আমরা সহায়তা করতে পারি এবং মহাকাশ সংক্রান্ত প্রায়োগিক বিষয়ে, প্রয়োজন অনুযায়ী পাঠক্রম তৈরির মাধ্যমে আমাদের সহায়তা বাড়াতে পারি। আমাদের মঙ্গল অভিযানের ক্ষেত্রে ফিজি সমর্থন অমূল্য। আমরা আশা করি যে, ভবিষ্যতে আমাদের অভিযানের জন্য টেলিমেট্রি, ট্রেকিং এবং কমান্ডের জন্য দ্বীপরাষ্ট্রগুলির কাছ থেকে সমর্থন অক্ষুন্ন থাকবে। ক্রমবর্ধমান হারে আমরা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের শিকার হচ্ছি, কিন্তু মানুষের উপর এই বিপর্যয়ের প্রভাব আমরা কমাতে পারি। মানব সম্পদ উন্নয়ন ও বিপর্যয়ের আগাম সতর্কতা সহ প্রাকৃতিক বিপর্যয় মোকাবিলায় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির সামর্থ্য ক্ষমতা তৈরি করতে ভারত আনন্দের সাথে রাজি আছে। সহযোগিতার ক্ষেত্রে মানব সম্পদের বিকাশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। দেশের ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার চাইতে বেশি কার্যকরী সহযোগতিা অন্য কিছু হতে পারে না। ভারতীয় কারীগরি ও অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রশিক্ষণের জন্য ফিজি পাবে ১১০টি স্লট এবং অন্য ১৩টি দেশের জন্য স্লটের সংখ্যা ১১৯ থেকে বাড়িয়ে ২৩৮ করা হবে। প্রশান্ত মহাসাগরীয় দ্বীপরাষ্ট্রগুলির কূটনীতিবিদদের জন্য প্রশিক্ষন কর্মসূচি আরও সম্প্রসারিত করা হবে এবং এর অতিরিক্ত আমরা ব্যাঙ্গালুরুর বিশ্ব খ্যাত ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অব ম্যানেজমেন্ট-এ দু-সপ্তাহের পাঠক্রমে অংশ নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছি। বিগত তিন বছরে, ৮টি দ্বীপরাষ্ট্রের ৪৩ জন গ্রামীন মহিলাকে সৌর ইঞ্জিনিয়ার হিসাবে প্রশিক্ষণ ভারত দিয়েছে। এখন আমরা ৭০ জন মহিলাকে সৌর ইঞ্জিনিয়ারকে প্রশিক্ষণ দিতে এবং ২৮০০টি বাড়িতে, প্রতিটি দ্বীপরাষ্ট্রের ২০০টি বাড়িতে, সৌর বিদ্যুতায়নে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ। এরফলে মিলিয়ন ডলার মূল্যের কেরোসিনের খরচ বাঁচবে এবং মহিলাদের জীবিকার সংস্থান হবে। আমি আনন্দের সাথে ঘোষণা করছি যে, আমরা প্রতিটি দ্বীপরাষ্ট্রে অন্তত একটি করে তথ্য-প্রযুক্তি ল্যাবরেটরি স্থাপন করবো। এরফলে স্থানীয় তথ্য-প্রযুক্তি পরিকাঠামোই শুধুমাত্র উন্নত হবে তা নয়, এর মাধ্যমে জনগণকে টেলি-মেডিসিন ও টেলি-এডুকেশন দেওয়ার বিষয়ে আমাদের প্রতিশ্রুতিও পূর্ণ করা যাবে। বাণিজ্যকে আরও মজবুত করতে আরও উদ্যোগ নিতে আমরা প্রস্তুত। দিল্লিতে এফ আই পি আই সি’র বাণিজ্য অফিস খোলা ছাড়াও আমরা অতিক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি উদ্যোগ বিকাশে সহায়তা করতে পারি এবং নারকেল শিল্পে প্রক্রিয়াকরণের জন্য যন্ত্রাংশ কেনাকাটায়, চাল ও আখ-এর উৎপাদন বাড়াতে আমরা সহায়তা করবো। বিভিন্ন দেশের মধ্যে স্থায়ী সম্পর্ক রচনার শক্তিশালী ভিত্তি হলো মানুষে-মানুষের মধ্যে বন্ধন | আপনাদের দেশ সমূহের বিশ্ববিদ্যালয় সমূহে বই-পুস্তক সরবরাহ করে এবং ই-লাইব্রেরি স্থাপন করার মধ্য দিয়ে আমরা সেখানে ভারত কেন্দ্র গঠনেও সহায়তা করব | নয়াদিল্লি, ৯ এপ্রিল, ২০১৫ ইয়েমেন থেকে ভারতের নাগরিকদের উদ্ধারের কাজে সহায়তা করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নওয়াজ শরিফকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। জুলাই মাসে জোহানেসবার্গে সফল ব্রিক্‌স শিখর সম্মেলন ও আজকের এই বৈঠক আয়োজন করার জন্য আমি রাষ্ট্রপতি রামাফোজা-কে অভিনন্দন জানাই। ব্রিক্‌স গোষ্ঠীভুক্ত দেশে মোট বিশ্বের জনসংখ্যার ৪২ শতাংশ মানুষ বসবাস করেন। গত চার বছরে ব্রিক্‌স গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি বিশ্ব উন্নয়নে চালিকাশক্তি হয়ে রয়েছে। আমাদের জনসংখ্যার সঙ্গে এর সামঞ্জস্য নেই। বিশ্বায়ন বহু মানুষকে দারিদ্র্য মুক্ত করেছে। যদিও এখনও আমাদের সামনে রয়েছে সুযোগ-সুবিধা সমানভাবে বন্টনের চ্যালেঞ্জ। ব্রিক্‌স গোষ্টীভুক্ত দেশগুলি আন্তর্জাতিক শান্তি, সুস্থিতি ও উন্নয়নে বিশেষ ভূমিকা নিচ্ছে। বিশ্বের অর্থনীতি ও রাজনীতির কাঠামো তৈরিতে আমরা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছি। আমরা ব্রিক্‌স গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি নতুন শিল্প বিপ্লবের জন্য সহযোগিতা বৃদ্ধিতে উৎসাহী। কর্মীদের সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্প এবং সারা বিশ্বের শ্রমিক উন্নয়ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মহিলাদের ক্ষমতায়ন, খাদ্য নিরাপত্তা-সহ আর্থ-সামাজিক বিষয়গুলি জি-২০ শিখর সম্মেলনে উত্থাপন করা হবে। ধারাবাহিক উন্নয়ন ও পরিকাঠামো উন্নয়নের জন্য এর আগে আমি বিপর্যয় মোকাবিলার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি। এই লক্ষ্য পূরণে আমাদের একযোগে কাজ করতে হবে। ভারত ব্রিক্‌স গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে রাজনৈতিক স্তরে মতামত আদান-প্রদানের বিষয়টিতে বিশেষ গুরুত্ব দেয়। এই লক্ষ্যে আমাদের বিদেশ মন্ত্রীদের মধ্যে বৈঠক জরুরি। সমগ্র বিশ্ব বর্তমানে সন্ত্রাসবাদের হুমকির সম্মুখীন এবং এটি একটি বড় সমস্যা। অর্থনৈতিক অপরাধী ও ঋণ খেলাপিদের বিরুদ্ধেও আমাদের একযোগে লড়াই চালাতে হবে। বিশ্ব অর্থনীতির স্থিতাবস্থায় এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে উঠতে পারে। জি-২০’তে আমাদের সমর্থনের ভিত্তি ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। ব্রিক্‌স গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলি জি-২০ ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াতে কার্যকর ভূমিকা নিচ্ছে। জি-২০ শিখর সম্মেলনের নেতৃত্ব দিচ্ছে একটি উন্নয়নশীল দেশ। তাই, উন্নয়নশীল দেশগুলির জন্য জি-২০’র দিশা-নির্দেশ যথাযথভাবে কার্যকর করার একটি দারুণ সম্ভাবনা রয়েছে। সবশেষে, আমি আবারও জোহানেসবার্গে সফল শিখর সম্মেলন এবং এই বৈঠক আয়োজনের জন্য রাষ্ট্রপতি রামাফোজা-কে ধন্যবাদ জানাই। আমি আগামী ব্রিক্‌স সম্মেলনে ব্রাজিলের নেতৃত্বদানকে ভারতের পক্ষ থেকে সম্পূর্ণ সমর্থন জানাচ্ছি ও সহযোগিতার আশ্বাস দিচ্ছি। ব্রাজিলের নেতৃত্বে ব্রিক্‌স সহযোগিতা এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছবে বলে আমি বিশ্বাস করি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। সমগ্র ভারত আজ প্রিয় অটলজীর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ। তাঁর প্রয়াণ যেন এক যুগাবসান। তিনি দেশের জন্যই বাঁচতেন এবং দশকের পর দশক ধরে তিনি দেশের সেবা করে গেছেন। তাঁর পরিবারের জন্য, বিজেপি কর্মকর্তাদের জন্য এবং লক্ষ লক্ষ ভক্ত সমর্থকদের জন্য, এই দুঃখের সময়ে আমার সমবেদনা রইল। অটলজীর অসাধারণ নেতৃত্ব ২১ শতকের এক শক্তিশালী, সমৃদ্ধ ও অন্তর্ভুক্ত ভারতের ভিত্তি স্হাপন করেছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে তাঁর দুরদৃষ্টি সম্পন্ন নীতি ভারতের প্রত্যেক নাগরিকের জীবনকে ছুঁয়ে গেছে। অটলজীর প্রয়াণ তাঁর কাছে এক ব্যক্তিগত এবং অপুরণীয় ক্ষতি বলে শ্রী মোদী মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেছেন, তাঁর সঙ্গে অজস্র প্রিয় স্মৃতি রয়েছে। তাঁর মতো কর্মকর্তাদের জন্য তিনি ছিলেন প্রেরণা স্বরূপ। তাঁর তীক্ষ্ণ মেধা এবং অসাধারণ রসবোধের জন্য তিনি তাঁকে বিশেষ করে মনে রাখবেন বলে শ্রী মোদী মন্তব্য করেছেন। অটলজীর সহ্যশক্তি এবং সংগ্রামের ফলেই তিল তিল করে বিজেপি গড়ে উঠেছে। নয়া দিল্লি, ২৮সেপ্টেম্বর: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শহীদ ভগত সিং-এর জন্মজয়ন্তীতে প্রণতি জানালেন| উজ্জ্বলডিসকম অ্যাস্যুর‍্যান্স যোজনা (উদয়) রূপায়ণের অগ্রগতি শুক্রবার এক বৈঠকে খতিয়েদেখলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ঋণ সমস্যার সমাধান, কাঠামোগত নজরদারি ওপর্যবেক্ষণ, আর্থিক মাপকাঠির পুনর্বিন্যাস, কাজকর্ম থেকে অর্জিত সাফল্য এবংগ্রাহকের ক্ষমতায়ন সহ যোজনার বিভিন্ন দিকগুলি প্রধানমন্ত্রীর কাছে তুলে ধরেন পদস্থসরকারি আধিকারিকরা। কয়লা খনিএবং খনিজ ব্লক বন্টন সম্পর্কে আধিকারিকদের এক উপস্থাপনাকালে নিলাম-পরবর্তী পর্যায়েখনিগুলির কাজকর্ম দ্রুততার সঙ্গে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে একটি সুনির্দিষ্ট দিশাস্থির করার সপক্ষে বক্তব্য রাখেন প্রধানমন্ত্রী। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলির ভূতাত্ত্বিকসমীক্ষা ও মানচিত্র প্রস্তুত করার সময় খনি সংশ্লিষ্ট সবক’টি দপ্তরের মধ্যে উন্নততরসমন্বয়ের ওপর বিশেষ জোর দেন তিনি। মঞ্চে উপস্থিত সকল মাননীয় ব্যক্তিবর্গ, ভাই ও বোনেরা, যতটা কাজ করতে পারি সেদিন করি। আর আজ রাতে যখন বিছানায় যাবো, ততক্ষণে পাঁচটি রাজ্যের সফর সম্পন্ন হবে। দিল্লি থেকে ছত্তিশগড়ে এসেছি। এখান থেকে ওড়িশা, পশ্চিমবঙ্গ হয়ে উত্তর প্রদেশে গিয়ে ঘুমাবো। জনসাধারণ যখন দায়িত্ব অর্পণ করেছেন, তা অত্যন্ত ঐকান্তিকতার সঙ্গে পালন করা উচিৎ। তিনি জল পরিষেবা, শিক্ষার প্রসার ও স্বাস্থ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে অনেক কাজ করে গেছেন। আজ এখানে আবিষ্কার ও স্বউদ্যোগ বিষয়ক একটি নতুন নীতির বাস্তবায়ন আপনাদের সামনে প্রস্তুত করা হচ্ছে। এজন্য আমি মুখ্যমন্ত্রী রমন সিং এবং তাঁর সরকারকে অভিনন্দন জানাই। সরকার সেজন্য ছোট ছোট শিল্পপতিদের উৎসাহ দিচ্ছে, তাদের জন্য ঋণের ব্যবস্থা করছে। অনাদায়ে গ্রাম ছেড়ে, পরিবারকে পথে বসিয়ে পালাতে হতো। এর মাধ্যমে কোনওরকম গ্যারান্টি ছাড়াই ব্যাঙ্কগুলি ৫০ হাজার থেকে ১০ লাখ টাকা ঋণ দেবে। ইতিমধ্যেই প্রায় দু’কোটি মানুষ এই ঋণ পেয়েছেন। অন্যদিকে, ব্যাঙ্কগুলি প্রায় ১ লক্ষ কোটিরও বেশি টাকা ঋণ দিয়েছে। যাঁরা ঋণ পেয়েছেন তাঁরা নিজেদের ব্যবসাকে বাড়িয়ে ২-৫ জন মানুষকে কর্মসংস্থানের সুযোগ দিতে পারবেন। এতদিন বিশ্বে প্রচলিত ধারণা ছিল দেশ চলে পাবলিক সেক্টর আর প্রাইভেট সেক্টরের যৌথ অর্থনীতির মাধ্যমে। আমরা অভিনব তৃতীয় ক্ষেত্রকে বেছে নিয়েছি। সেটি হল, এই পার্সোনাল সেক্টর – ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের দিকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়ে দেশের তৃণমূল স্তরের মানুষের ক্ষমতায়নে জোর দিয়েছি আমরা। শিক্ষিত বেকার যুবক-যুবতীরা স্বউদ্যোগ গড়ে তুলে একসঙ্গে অনেক কর্মচারীর কর্মসংস্থানের মাধ্যমে এই পার্সোনাল সেক্টরকে আরও শক্তিশালী করে তুলবেন। এই প্রকল্প প্রণয়নের ফলে রাজ্যে যে ইতিবাচক পরিবেশ গড়ে উঠেছে তার পরিণাম আমরা ইতিমধ্যেই দেখতে পাচ্ছি। প্রায় ৭০ শতাংশ তপশিলি জাতি, উপজাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী থেকে এসেছেন আর অন্যদিকে মহিলা স্বউদ্যোগীরাও এগিয়ে এসেছেন। একটি নতুন সমান্তরাল অর্থনীতির শক্তি ক্রমে জোরালো হয়ে উঠছে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, এতে লাভবান হবেন রাজ্যের নবীন প্রজন্মের মানুষজন। আজ এখানে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনারও শুভসূচনা হচ্ছে। তাঁরা ভূমিহীন, প্রায় কপর্দকশূন্য। তাঁদের পরিবার গড়ে তোলার পরিস্থিতি থাকে না, স্বপ্নও দেখেন না তাঁরা। ছোট একটা নিজেস্ব মাথা গোঁজার ঠাঁই পেলে তাঁরা পরিশ্রম করে একদিন ঋণ শোধ করতে প্রস্তুত। তখন ঋণের কিস্তি দেওয়ার পরও ১০ টাকা বাঁচানোর চেষ্টা করে পাপোস কিনে আনা যায়। দেশের প্রতিটি রাজ্য সরকার এগিয়ে এসে গৃহহীনদের কোথায় থাকার জায়গা দেবেন, সেই স্থানগুলি চিহ্নিত করুন। গরিব গৃহহীন মানুষ মাথা গোঁজার ঠাঁই পাবেন। ২০২২ সালের মধ্যে আমাদের এই কাজ শেষ করতে হবে। এই বিশ্বাস ও আশা নিয়ে আমি আরেকবার মুখ্যমন্ত্রী রমন সিং এবং তাঁর কর্মীদলকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। শ্রদ্ধেয় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ভেঙ্কাইয়া নাইডু এই বিভাগকে গতিশীল করে তুলতে দিনরাত কাজ করেছেন, লেগে রয়েছেন। আমার দৃঢ় বিশাস, এই স্বপ্ন সফল হবেই। আফ্রিকান ইউনিয়নের মহামান্য সভাপতি, আফ্রিকান ইউনিয়ন কমিশনের চেয়ারপার্সন মাননীয় রবার্ট মুগাবে, মাদাম লামিনি জুমা এবং অন্যান্য গণ্যমান্য অতিথিবৃন্দ। আফ্রিকার ১৫টি সার্বভৌম দেশের পতাকা শোভিত আজকের বিশ্ব অনেক উজ্জ্বল বলে মনে হচ্ছে। আজকের এই বর্ণাঢ্য সমাবেশ দিল্লিকে বিশ্বের এক বিশেষ স্থানের মর্যাদা দান করেছে। ৪১টি দেশ ও সরকারের প্রধান এবং অন্যান্য বিশিষ্ট নেতৃবৃন্দ, শত শত প্রবীণ ও পদস্থ সরকারি আধিকারিক, বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দ এবং আফ্রিকার সমবেত সাংবাদিকবৃন্দ – আপনাদের সকলকের উদ্দেশেই আমার নিবেদন – আপনাদের উপস্থিতি আজ আমাদের ভীষণ ভীষণভাবে সম্মানিত করে তুলেছে। যে মহাদেশ থেকে ইতিহাসের সূচনা, মানবতার উৎপত্তি এবং নতুন আশা-আকাঙ্ক্ষার উন্মেষ তার উদ্দেশ্যেও আমার একই বার্তা। উত্তরের মরু অঞ্চল যেখানে ভাসমান ধূলিকণার মধ্য দিয়ে মানবসভ্যতার গর্ব সমুজ্জ্বল হয়ে ওঠে তার উদ্দেশ্যেও আমার একই নিবেদন। আমার একই বার্তা দক্ষিণের প্রতি যেখানে মহাত্মা গান্ধী থেকে অ্যালবার্ট লাথুলি হয়ে নেলসন ম্যান্ডেলা পর্যন্ত বর্তমান যুগের বিবেকের বাণী প্রতিধ্বনিত হয়েছে। আপনাদের সকলকে জানাই ভারতের পক্ষ থেকে মৈত্রীর আন্তরিক অভিনন্দন ও আলিঙ্গন। আর এরই ছন্দে অনুরণিত হচ্ছে ১২৫ কোটি ভারতবাসী এবং ১২৫ কোটি আফ্রিকার জনসাধারণের হৃদয়স্পন্দন। বিশ্বের প্রাচীনতম সভ্যতার অংশীদার আমরা উভয়েই। আমাদের উভয়েরই রয়েছে ভাষা, ধর্ম ও সংস্কৃতির এক উজ্জ্বল ঐতিহ্য। মহাসাগরের সুতীব্র ঢেউ আমাদের আত্মীয়তাবোধ, আমাদের বাণিজ্য, আমাদের সংস্কৃতিকে বহু শতাব্দী ধরেই আরও সমৃদ্ধ করে তুলেছে। অদৃষ্টের খোঁজে কিংবা পরিস্থিতির বশে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ভারত ও আফ্রিকার জনসাধারণ পরস্পরের দেশে যাত্রা করেছে। আর এভাবেই আমরা পরস্পরকে সমৃদ্ধ করেছি এবং আমাদের সম্পর্ক হয়ে উঠেছে গভীরতর। ঔপনিবেশিকতাবাদের সুদীর্ঘ ছায়ার মধ্যে আমরা একদা বাস করেছি। সেইসঙ্গে, মুক্তি ও মর্যাদার লক্ষ্যে আমরা সংগ্রামও করেছি। তরুণরা যাতে ভবিষ্যতের দখল নেয় সেই লক্ষ্যে আমারদের গড়ে তুলতে হবে বর্তমান শতাব্দীকে। আফ্রিকার সুপ্রাচীন সাফল্যের ঘটনাবলীর সঙ্গে আমরা সকলেই পরিচিত। বর্তমানে তার আধুনিক কর্মপ্রচেষ্টা ইতিমধ্যেই বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। ঐ মহাদেশ বর্তমানে অনেক বেশি স্থিতিশীল। আফ্রিকার বিভিন্ন জাতি আজ তাদের উন্নয়ন, শান্তি ও নিরাপত্তার দায়িত্ব গ্রহণে জোটবদ্ধ হয়েছে। আফ্রিকার সংসদের প্রায় ২০ শতাংশ সদস্যই বর্তমানে মহিলা। এই সাফল্যের পেছেনে রয়েছে যাঁর বিশেষ অবদান সেই প্রেসিডেন্ট স্যারলিফ-কে আজ তাঁর জন্মদিনে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। আফ্রিকার অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি বর্তমানে বহুধা বিস্তৃত। আফ্রিকার উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা অতীতের ভুলভ্রান্তি দূর করে আঞ্চলিক তথা অর্থনৈতিক সংহতির নতুন নতুন সেতুবন্ধন করে চলেছে। অর্থনৈতিক সংস্কার, পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং সহায়সম্পদের নিরন্তর সদ্ব্যবহারের অনেক সফল নিদর্শন আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। এ সমস্ত কিছুই অর্থনীতিকে আরও গতিশীল করে তুলেছে। এম-পেসা-র মোবাইল ব্যাঙ্কিং, মেড আফ্রিকার স্বাস্থ্য পরিচর্যা উদ্ভাবন কিংবা এগ্রিম্যানেজার এবং কিলিমো সালামার কৃষি উদ্ভাবন মোবাইল ও ডিজিটাল প্রযুক্তিকে আশ্রয় করে গড়ে উঠেছে এবং তা আফ্রিকার জীবনযাত্রাকে আমূল বদলে দিয়েছে। অনেক নতুন নতুন শক্তিশালী ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও কৃষির দ্রুত বিকাশের লক্ষ্যে। আফ্রিকার প্রাথমিক স্কুলগুলিতে ছাত্রছাত্রীদের সংখ্যা ইতিমধ্যেই ৯০ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে। আফ্রিকার রয়েছে এক নয়নাভিরাম প্রকৃতি যেখানে গড়ে উঠেছে বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ ও পরিবেশ পর্যটনের মতো নতুন নতুন ব্যবস্থা। ক্রীড়া, সঙ্গীত এবং শিল্পকলা ক্ষেত্রেও সমগ্র বিশ্ব আজ আফ্রিকায় আমোদিত। একথা সত্যি যে বিশ্বের অন্যান্য বিকাশশীল দেশের মতোই উন্নয়নের ক্ষেত্রে আফ্রিকাও বহুবিধ চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো আফ্রিকারও রয়েছে উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের মতো নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাজনিত উদ্বেগ ও উৎকন্ঠা। আফ্রিকার জনসাধারণ ও নেতৃবৃন্দ সাফল্যের সঙ্গে এই সমস্ত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করবেন বলে আমার স্থির বিশ্বাস। গত ছয় দশক ধরে আমাদের স্বাধীন যাত্রা শুরু হয়েছে একত্রেই। বর্তমানে ভারতের উন্নয়নের ক্ষেত্রের অগ্রাধিকার এবং আফ্রিকার ভবিষ্যতের দৃষ্টিভঙ্গীর মধ্যে এক সমন্বয় সম্ভব হয়ে উঠেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে আজকের দিনে ভারত ও আফ্রিকা আশা ও সুযোগ-সম্ভাবনার দুটি উজ্জ্বল কেন্দ্রবিন্দু। আফ্রিকার উন্নয়নে অংশীদার হতে পেরে ভারত সম্মানিত। কৌশলগত সম্পর্ক এবং অর্থনৈতিক সুফলের বাইরেও এই অংশীদারিত্ব অটুট। পরস্পরের প্রতি আবেগ ও সংহতির মনোভাব থেকেই তা গড়ে উঠেছে। এক দশকেরও কম সময়কালে আমাদের ব্যবসা-বাণিজ্য দ্বিগুণেরও বেশি হয়ে ৭০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। আফ্রিকায় বর্তমানে বাণিজ্যিক বিনিয়োগের একটি প্রধান উৎসই হল ভারত। আফ্রিকার ৩৪টি দেশ এখন ভারতের বাণিজ্যিক বাজারের শুল্কমুক্ত পরিবেশের সুযোগ গ্রহণ করতে পারে। শুধুমাত্র গত তিন বছরেই আফ্রিকার ২৫ হাজার তরুণ ও যুবক শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ লাভ করেছে ভারতে। আমি মনে করি ঐ ২৫ হাজার যুবক হল আমাদের উভয়ের যুক্ত সম্পর্কের এক বলিষ্ঠ উদাহরণ। অনেক সময়েই আপনাদের প্রত্যাশা হয়তো আমরা পূরণ করতে পারিনি। এমন অনেক সময় অতিক্রান্ত হয়েছে যখন আপনাদের বিভিন্ন বিষয়ে আমাদের যতটা মনযোগ দেওয়ার কথা ততটা আমরা দিতে পারিনি। আমাদের দেওয়া বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি ও অঙ্গীকার যত তাড়াতাড়ি পালন করা উচিত তত তাড়াতাড়ি হয়তো আমরা তা করে উঠতে পারিনি। কিন্তু আপনারা সবসময়ই আপনাদের উষ্ণতা ও বিচার-বুদ্ধির মধ্য দিয়ে ভারতের সমাদর করেছেন। আমাদের সাফল্যে আপনারা উল্লসিত হয়েছেন, গর্ববোধ করেছেন। বর্তমান বিশ্বে বরাবরই আপনারা রয়েছেন আমাদের সঙ্গে, আমাদের পাশে। আমাদের মৈত্রী ও অংশীদারিত্বের শক্তি এতটাই। আগামী দিনে একত্রে পথ অতিক্রমের সময় আমাদের অভিজ্ঞতালব্ধ জ্ঞান ও প্রজ্ঞা এবং আমাদের পথনির্দেশকে সঙ্গী করে আমরা এগিয়ে যাব। এক সমৃদ্ধ, সংহত এবং ঐক্যবদ্ধ আফ্রিকা গড়ে তোলার লক্ষ্যে আপনারা যে দৃষ্টিভঙ্গীর আশ্রয় নিয়েছেন তার জন্য রইল আমাদের পূর্ণ সমর্থন। নাইজিরিয়ার বিশিষ্ট নোবেল বিজয়ী লরেট ওল সোয়িঙ্কার কথা অনুসরণ করে আমি বলি সামগ্রিক উন্নয়নের মূলে রয়েছে মানবজাতি। সেইসঙ্গে, তরুণ ও যুবকদের সামনে উন্মুক্ত করে সুযোগ সম্ভাবনার নতুন নতুন দ্বার। তাই, জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে মানবসম্পদের উন্নয়নই হল আমাদের অংশীদারিত্বের মূল অন্তঃস্থল। ইজিপ্টের নোবেল পুরস্কার বিজয়ী সাহিত্যিক নাগুইব মাফৌজ বলেছেন, “চিন্তাভাবনার আলোকে বিজ্ঞান মানুষকে যুক্ত করে … আমাদের এগিয়ে নিয়ে যায় উন্নততর ভবিষ্যতের দিকে।” মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করার এবং প্রগতিকে গতিশীল করে তোলাকে প্রকাশ করার মতো এর থেকে ভালো ভাষা খঁজে পাওয়া কঠিন। সুতরাং, প্রযুক্তি হয়ে উঠবে আমাদের অংশীদারিত্বের এক শক্তিশালী স্তম্ভ। এর ফলে, উন্নত হবে আফ্রিকার কৃষিক্ষেত্র। আফ্রিকার কৃষি ব্যবস্থা এই মহাদেশের সমৃদ্ধিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে পারে, নিশ্চিত করে তুলতে পারে বিশ্বের খাদ্য নিরাপত্তাকে। সুপ্রাচীন জ্ঞান ও চিকিৎসা ব্যবস্থার যে সম্পদ রয়েছে ভারত ও আফ্রিকায় তার উন্নয়নে আমরা পরস্পরের সঙ্গে যুক্ত হতে পারি। আমাদের মহাকাশ-সম্পদ ও প্রযুক্তিগত সহায়তা দিতেও আমরা প্রস্তুত। বিকাশ ও উন্নয়ন, জনপরিষেবা, সুশাসন, বিপর্যয় মোকাবিলা, সম্পদের ব্যবস্থাপনা এবং জীবনযাত্রার মান উন্নয়নে সম্ভাব্য সমস্তরকম ডিজিটাল প্রযুক্তিকে আমরা কাজে লাগাব। নীল অর্থনীতির নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যে আমরা আমাদের সহযোগিতা প্রসারিত করব কারণ, তা হয়ে উঠবে আগামী দিনে আমাদের সমৃদ্ধির এক চালিকাশক্তি। সূর্যাস্তকালে ভারত ও আফ্রিকার অগণিত গৃহ প্রাঙ্গণ অন্ধকারে ঢাকা পড়ে। আমরা চাই দেশের মানুষের জীবনকে আলোকোজ্জ্বল করে তুলতে এবং তাদের ভবিষ্যতকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে। বিশ্ব উষ্ণায়নের পিছনে দায়ী শুধু ভারত বা আফ্রিকাই নয়, পৃথিবীর বহু দেশই এজন্য দায়ী। বরং, জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে ভারত ও আফ্রিকা যতটা সচেতন সেরকম সচেতনতা পৃথিবীর অন্যত্র বিরল। ভারতে ২০২২ সালের মধ্যে ১৭৫ গিগাওয়াট অতিরিক্ত পুনর্নবীকরণ জ্বালানির উৎপাদন এবং ২০৩০ সালের মধ্যে দূষিত গ্যাস নির্গমনের মাত্রা ৩৩ থেকে ৩৫ শতাংশ হ্রাসের লক্ষ্যে আমরা নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। বিশুদ্ধ জ্বালানি, বাসস্থান, জনপরিবহণ এবং জলবায়ু-বান্ধব কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও ভারত-আফ্রিকা সহযোগিতাকে আমরা আরও সুদৃঢ় করে তুলব। একটি বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে যাতে কোনরকম অত্যুৎসাহ যেন অন্যের বিড়ম্বনার কারণ না হয়ে দাঁড়ায়। সুতরাং, ডিসেম্বরে প্যারিসে বিশ্ব বৈঠকের সময় আমরা এক সুসংবদ্ধ ও সুনির্দিষ্ট ফলাফল লক্ষ্য করব যার ভিত্তিই হল জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সম্মেলনের নীতির সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ। আমরা সকলেই একটি দায়িত্ব হিসেবেই তা পালন করব। সেইসঙ্গে, আমরা এমন এক নির্ভেজাল বিশ্ব অংশীদারিত্বের সাক্ষী হতে চাই যা বিশুদ্ধ জ্বালানিকে সুলভ করে তুলতে পারে, উন্নয়নশীল দেশগুলির কাছে পৌঁছে দিতে পারে আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তা এবং আবিষ্কার করতে পারে এমন উপায় যা জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় সক্ষম। জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে সৌরশক্তি গড়ে তোলাই আমাদের লক্ষ্য যাতে যে সমস্ত গ্রাম ও সমষ্টি এখনও বিদ্যুতের সুযোগ থেকে বঞ্চিত সেখানে তা পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়। ভারত ও আফ্রিকা বিশ্ব বাণিজ্যের ক্ষেত্রে এমন এক পরিবেশ গড়ে তুলতে চায় যা আমাদের উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এবং বাণিজ্যিক সম্ভাবনার উন্নয়নে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। যখন আমরা ডিসেম্বরে বিশ্ব বাণিজ্য সংগঠনের নাইরোবি সম্মেলনে একত্রিত হব তখন ২০০১-এর দোহা উন্নয়ন কর্মসূচির ওপর যাতে যবনিকাপাত না হয় তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে কারণ, আমাদের মৌলিক লক্ষ্যগুলিতে পৌঁছনোর কাজ এখনও বাকি। সমগ্র বিশ্ব এমন এক গতি ও মাত্রায় রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক, প্রযুক্তিগত এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত পট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চলেছে সাম্প্রতিক ইতিহাসে যার দৃষ্টান্ত বিরল। অজানা ভবিষ্যতে সেই প্রতিষ্ঠানগুলির পরিবর্তে কি ধরনের পরিস্থিতির উদ্ভব হবে তা আমরা এখনই বলতে পারি না। কিন্তু আমরা এমন এক বিশ্বের সন্ধান পেতে পারি যাকে হয়তো আমাদের মতো এত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হবে না। আর এই কারণেই বিশ্ব প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কারের পক্ষপাতী ভারত। বর্তমান বিশ্ব স্বাধীন জাতি ও উজ্জ্বীবিত আশা-আকাঙ্ক্ষার এক নতুন দিগন্ত সৃষ্টি করেছে। আর এজন্যই নিরাপত্তা পরিষদ সহ রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্কারে ভারত ও আফ্রিকাকে একযোগে সরব ও সোচ্চার হতে হবে। আজকের দিনে বিশ্বের নানা প্রান্তে হিংসাদীর্ণ অস্থিরতার মধ্যেও উজ্জ্বল ভবিষ্যতের আলো দেখা দিয়েছে। আফ্রিকার পথেঘাটে, সমুদ্রতটে, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান তথা বিপণন কেন্দ্রে সন্ত্রাসবাদ যখন জীবন ছিনিয়ে নেয় তখন আপনাদের ব্যাথা-বেদনা আমরা নিজেদের ব্যাথা-বেদনা ও যন্ত্রণা বলেই অনুভব করি। সন্ত্রাসবাদের এই হুমকির বিরুদ্ধে সংগ্রামে আমাদের মধ্যে এক যোগসূত্র এইভাবেই স্থাপিত হয়েছে। আমরা যখনই দেখি আমাদের মহাসাগর অঞ্চল বাণিজ্যের পক্ষে আর নিরাপদ নয়, আপনাদের সঙ্গে আমরাও তাতে কষ্ট পাই। জাতিতে জাতিতে যখন সংঘর্ষ বাধে তখন চারপাশের আমরাও নিরাপদ দূরত্বে বসে থাকতে পারি না। নিরাপত্তার প্রশ্নে দূরত্ব কখনই আমাদের একে অপরের থেকে বিচ্ছিন্ন করতে পারে না। এছাড়াও, আমরা দেব ৬০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো অনুদান সহায়তা। এর মধ্যে রয়েছে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ভারত-আফ্রিকা উন্নয়ন তহবিল এবং ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ভারত-আফ্রিকা স্বাস্থ্য তহবিল। এই তহবিল থেকে ৫০ হাজার বৃত্তি দেওয়া হবে ভারতে আগামী পাঁচ বছর ধরে। আর এই তহবিলের সাহায্যেই আফ্রিকায় সম্প্রসারিত হবে দক্ষতা উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ এবং শিক্ষার প্যান আফ্রিকা ই-নেটওয়ার্ক। আমরা সকলেই একসঙ্গে কাজে মিলিত হব। বরং তা হল এক সুপ্রাচীন সম্পর্কের মহান ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার প্রতিশ্রুতি। বন্ধুগণ, সেদিন আর নেই যখন অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকে ভারতকে ‘ভঙ্গুরতম পাঁচ’টি দেশের অন্যতম বলে গণ্য করা হতো! আজ, আমরা বিশ্বের দ্রুততম বিকাশমান অর্থনীতির দেশ। ১২৫কোটিভারতবাসীর শক্তিতে বলীয়ান এই দেশ এখন আরও দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে। একটি সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারত রেকর্ড পরিমাণ কম সময়ে দারিদ্র্য দূরীকরণে সাফল্য পেয়েছে। সেই রিপোর্ট অনুযায়ী, গত দু’বছরে ভারত ৫ কোটি মানুষকে দারিদ্র্যসীমার উপরে টেনে তুলতে পেরেছে। এই অসাধ্য সাধন কারা করেছে? দেশের সাধারণ মানুষের আন্তরিক প্রচেষ্টাতেই এটা সম্ভব হয়েছে। সরকার শুধু ইতিবাচক পরিবেশ অ সুযোগ সুবিধা প্রদানের কাজ করেছে। কিন্তু দেশের যুবসম্প্রদায় সেই সুযোগগুলির সদ্ব্যবহারের পাশাপাশি নিজেরাও অনেক নতুন নতুন সুযোগ তৈরি করেছে। বন্ধুগণ, নতুন ভারতের সম্পদ হল ১২৫ কোটি ভারতবাসী, কিন্তু এর ভিত্তি হল যুব ভারত। কারা এই অসাধারণ কাজ করেছে? নবীন প্রজন্মের চিকিৎসকদের নেতৃত্বে, সেবিকা এবং সহায়ক কর্মীরাই স্বচ্ছাসেবকদের সঙ্গে নিয়ে এই কাজ করেছে। গত চার বছরে ১.৭৫ লক্ষ কিমি গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ একটি বড় কাজ। কারা বানিয়েছে? দেশের নবীন কর্মচারী ও শ্রমিকরা। এখন আমরা প্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌছনোর অভিযান চালাচ্ছি। ২০১৭-র অক্টোবর থেকেপ্রত্যেক বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌছনোর অভিযান শুরু করে ইতিমধ্যেই আমরা ৮৫ লক্ষ বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে পেরেছি। কারা তাঁদের সহনাগরিকদের বাড়ির অন্ধকার দূর করার কাজ করেছে? নবীন ইলেক্ট্রিশিয়ান ও প্রযুক্তিবিদরা। কারা ৪ কোটি ৬৫ লক্ষ বাড়িতে বিনামূল্যে রান্নার গ্যাস সংযোগ পৌঁছে দিয়েছে? দেশের যুবসম্প্রদায়। গত চার বছরে এক কোটিরও বেশি গৃহহীনকে গৃহনির্মাণ করে তাঁদের হস্তান্তর করা হয়েছে। কারা করেছে? নবীন ইঞ্জিনীয়ার, রাজমিস্ত্রী ও শ্রমিকরা করেছে। দেশের যুবসম্প্রদায়ের কর্মসংস্থানের জন্য প্রয়োজনীয় দক্ষতা উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে দক্ষ ভারত প্রকল্প শুরু করা হয়েছে। দেশের গ্রামগুলিকে ইতিমধ্যেই ২.৭ লক্ষ কিলোমিটার অপটিক্যাল ফাইবার পেতে ১ লক্ষেরও বেশি পঞ্চায়েতকে আইওয়ে দ্বারা যুক্ত করা হয়েছে। দেশে স্বনির্ভর প্রকল্পগুলিকে উৎসাহ প্রদান করতে মুদ্রা প্রকল্প ও স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া চালু করা হয়েছে। গরিব, নিম্নবিত্ত ও নিম্ন মধ্যবিত্ত পরিবারগুলির স্বাস্থ্য সুরক্ষার কথা ভেবে আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প চালু করার পথে আমরা অনেকটা এগিয়ে গেছি। আজ দেশে আপনারা অনেক সহজেই কোনও স্টার্ট আপ বিজনেস নথিভুক্ত করতে পারেন। সরকারি দপ্তরগুলির জন্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যাদি ক্রয়ের ক্ষেত্রে স্টার্ট আপগুলিকে অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। কর্মসংস্থান বৃদ্ধি পাওয়ায় যুবসম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন হয়েছে ও তাঁদের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হয়েছে। প্রত্যেক নাগরিকের ভবিষ্যৎ উজ্জ্বল হলে দেশের ভবিষ্যত ও বিশ্ব মঞ্চে ভারতের মুখ উজ্জ্বল হবে। আজ ব্রাজিলের স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি সেদেশের জনগণকে আন্তরিক শুভেচ্ছা জানিয়েছেন| আমি দেখতে পাচ্ছি যে, ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে এই সম্পর্কের বন্ধন আরো বিকশিত হওয়ার বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, যাতে উপকৃত হবে উভয় দেশের জনগণ|” প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে, কন্সটিটিউশন (সিডিউল্ড ট্রাইবস্‌) অর্ডার, ১৯৫০ – এর সংশোধনের জন্য দ্য কন্সটিটিউশন (সিডিউল্ড ট্রাইবস্‌) অর্ডার (অ্যামেন্ডমেন্ট) বিল, ২০১৮-কে অনুমোদন করা হয়েছে। ৬ নম্বর সিরিয়ালে ‘খামতি’ শব্দটির পরিবর্তে ‘তাই খামতি’ বসানো হবে। এছাড়া, ৮ নম্বর সিরিয়ালে ‘মিসমি – কমন’ (মিজু মিসমি); ‘ইডু’ (মিসমি) এবং ‘তারাওঁ’ (দিগারু মিসমি)-দের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। অন্যদিকে, ৯ নম্বর সিরিয়ালে ‘মোম্বা’ শব্দটির পরিবর্তে ‘মনপা’, ‘মেম্বা’, ‘সারতাং’, ‘সাজোলং’ (মিজি)-দের অন্তর্ভুক্ত করা হবে। কিন্তু, ভারতে উন্নয়নের যে ব্যাপক ক্ষেত্র পড়ে রয়েছে, তারপরিপ্রেক্ষিতে প্রাকৃতিক সহায়সম্পদ এবং মানবসম্পদকে যদি বুদ্ধি ও বিচক্ষণতার সঙ্গেকাজে লাগানো যায়, তা হলে তা হয়ে উঠতে পারে পরিবর্তনের এক দ্যোতক। এই প্রসঙ্গেরবিশদ অবতারণা করে এবং কয়েকটি দৃষ্টান্তের কথা তুলে ধরে জমির উপযুক্ত ব্যবহার,দেশের খনিজ সম্পদ এবং এ পর্যন্ত অব্যবহৃত দেশের বিশাল সৌরশক্তিকে কাজে লাগানোর কথাবলেন তিনি। ভারতের যে দীর্ঘ উপকূল রেখা রয়েছে, তার খুব কমই এ পর্যন্ত সেভাবেব্যবহার করা হয়েছে বলে মত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। কৃষি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন,শুধুমাত্র কৃষির উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি যথষ্ট নয়, এক উজ্জ্বল গ্রামীণ অর্থনীতি গড়েতোলার লক্ষ্যে সার্বিক উন্নয়নের দিকে দৃষ্টি দেওয়াও একান্ত প্রয়োজন। কৃষিক্ষেত্রেরবিকাশে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প, মজুত ব্যবস্থার প্রসার এবং প্রযুক্তিগত উপকরণ ওসাজসরঞ্জামের গুরুত্বের কথাও তুলে ধরেন তিনি। নীতি প্রণয়নের তুলনায় নীতিরচয়িতাদের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য আরও বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেনপ্রধানমন্ত্রী। সুপ্রশাসনের স্বার্থে ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির ওপর জোর দিয়েআক্ষরিক অর্থেই তা বাস্তবের জমিতে প্রতিফলিত করার ওপর জোর দেন তিনি। রান্নার গ্যাসের ওপর স্বেচ্ছায় ভর্তুকিপ্রত্যাহার সম্পর্কিত ‘গিভ ইট আপ’ কর্মসূচি এবং দেশবাসীর স্বতঃস্ফূর্ত ও ইতিবাচকমধ্য দিয়ে রূপায়িত স্বচ্ছতা অভিযানের সাফল্য থেকে অনুপ্রাণিত হওয়ার জন্যপ্রধানমন্ত্রী আর্জি জানান নীতি আয়োগের কাছে। তিনি বলেন, এই অভিজ্ঞতা থেকে এটাইপ্রমাণিত হয়েছে যে, সাধারণ মানুষ শুধুমাত্র নিজেদের স্বার্থ পূরণের জন্যই উৎসাহিতনয় , বরং দেশবাসীরবৃহত্তর স্বার্থে তাঁরা ত্যাগ স্বীকারেও আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী প্রাক্তন প্রতিরক্ষা ও রেলমন্ত্রী শ্রী জর্জ ফার্নান্ডেজের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “জর্জ সাহেব ছিলেন ভারতের সেরা রাজনীতিকদের মধ্যে একজন। তাঁর প্রয়াণে অত্যন্ত দুঃখিত। আমরা যখন জর্জ ফার্নান্ডেজের কথা ভাবি, তখন শ্রমিক সংগঠনের এক দৃঢ়চেতা নেতা হিসাবে তাঁকে স্মরণ করি।তিনি ন্যায়-বিচারের লক্ষ্যে সংগ্রাম করেছিলেন।অতি সহজেই ও বিনম্রতার সঙ্গে তিনি রাজনৈতিক ব্যক্তিদের সম্মান ও শ্রদ্ধা অর্জন করতে পারতেন।একজন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রেলমন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রী হিসাবে তিনি ভারতকে নিরাপদ ও শক্তিশালী করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বিভিন্ন দ্বীপের সামগ্রিক উন্নয়নের প্রগতি পর্যালোচনা করেন। ২০১৭-র পয়লা জুন, কেন্দ্রীয় সরকার দ্বীপ উন্নয়ন সংস্হা গঠন করে। তাতে সামগ্রিক উন্নয়ন তালিকায় আনা হয় ২৬টি দ্বীপকে। মূল পরিকাঠামোমূলক প্রকল্প, ডিজিটাল সংযোগ, গ্রিন এনার্জি, বর্জ্য পরিচালন, মাছ চাষ বাড়ানো, পর্যটন-ভিত্তিক প্রকল্পগুলির উন্নয়ন-সহ সামগ্রিক উন্নয়নের বিভিন্ন উপাদান নিয়ে নীতি আয়োগ একটি রিপোর্ট পেশ করে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের কাজকর্ম পর্যালোচনা করে প্রধানমন্ত্রী সুসংহত পর্যটন কেন্দ্রিক বাস্তু ব্যবস্হার উন্নয়ন ঘটানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। দ্বীপগুলিকে সৌরশক্তির ওপর ভিত্তি করে, শক্তিক্ষেত্রে আত্মনির্ভর করে তোলার জন্যও প্রধানমন্ত্রী আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সীমাশুল্কে পারস্পরিক সহায়তা এবং সহযোগিতা নিয়ে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রটি অনুমোদন করল। সীমান্ত প্রহরায় থাকা জওয়ানদের বীরত্বেরপ্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতার মূল্য হচ্ছে শাশ্বত সতর্কতা| প্রধানমন্ত্রী হিন্দি কবি মাখনলাল চতুর্বেদী ওরামধারী সিং দিনকর-এর উদ্ধৃতি দিয়ে ভারতীয় সশস্ত্র বাহিনী আত্মবলিদানের গৌরবময়ঐতিহ্যের গুণগান করেন| আগামি ‘মন কি বাত’ হবে ২০১৬-তে। কিছুদিন আগে আমরা Christmasপালন করেছি, আর এখন নতুন বছরকে স্বাগত জানানোর প্রস্তুতি চলছে। ভারত এক বৈচিত্র্যপূর্ণ দেশ। এখানে বিভিন্ন প্রকার উৎসব লেগেই থাকে। একটা যেতে না যেতে আরেকটা চলে আসে। একপ্রকার, এক-একটা উৎসব পরের উৎসবকে আমন্ত্রণ জানিয়ে চলে যায়। কখনো কখনো মনে হয়, ভারত এমন একটা দেশ যেখানে উৎসবের সঙ্গে অর্থনীতিও জুড়ে রয়েছে। সমাজের দরিদ্র শ্রেণির মানুষের রোজগারের উপায় হল উৎসব। আমিও সকল দেশবাসীকে Christmas-এর অনেক শুভেচ্ছা আর ইংরেজি নতুন বছর ২০১৬-র অনেক অনেক শুভকামনা জানাচ্ছি। ২০১৬ আপনাদের সবার জন্য অনেক খুশি নিয়ে আসুক। নতুন আনন্দ, নতুন আশা, নতুন সংকল্প আপনাদের নতুন এক উচ্চতার শিখরে পৌঁছে দিক। সন্ত্রাসবাদ হোক, বিশ্ব উষ্ণায়ণ হোক, প্রাকৃতিক বিপর্যয় হোক, মানব-সৃষ্ট অন্যান্য সংকট হোক – সব কিছু থেকে পৃথীবি যেন মুক্ত থাকে। মানুষের জীবনে সুখ-শান্তি আসুক, এর থেকে বড় আনন্দের বিষয় কী হতে পারে? পুনে থেকে শ্রী গনেশ ভি সাওলেশওয়ার্কার আমায় লিখে জানিয়েছেন যে, এই সময়টা পর্যটনের মরশুম। দেশ-বিদেশ থেকে বহু পর্যটক আসেন। অনেকে Christmas-এর ছুটি কাটাতে বাইরে যান। আমাদের পর্যটনকেন্দ্রগুলি যত পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকবে, বিশ্বের দরবারে ভারতের ছবি তত উজ্জ্বল হবে। ঠিক সেই ভাবে আমাদের পর্যটনস্থলগুলিকে, বিশ্রামাগারগুলি ও অতিথিনিবাসগুলি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা প্রকৃতপক্ষে একটা বড় কাজ। আমি খুবই আনন্দিত যে দেশকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার খবর, আমি নিয়মিত ভাবে পাচ্ছি। উনি একজন সাধারণ রাজমিস্ত্রী। উনি এক অভিনব কাজ করেছেন, যা সংবাদপত্রে ছাপা হয়েছে। তাই আমার মনে হয়েছে, এটা আপনাদের কাছে পৌঁছে দিই। একটা ছোটো গ্রামের বাসিন্দা দিলীপ সিংহ মালভিয়া স্থির করলেন যে গ্রামের কেউ যদি শৌচালয় তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় উপকরণ জোগাড় করে দেয়, তবে উনি বিনা পারিশ্রমিকে শৌচালয় তৈরি করে দেবেন। এই কাজকে পবিত্র ভেবে উনি এই পর্যন্ত ভোজপুরা গ্রামে প্রচণ্ড পরিশ্রম করে এখনও পর্যন্ত ১০০টি শৌচালয় নির্মাণ করে ফেলেছেন। আমি দিলীপ সিং মালভিয়াকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আমাদের দেশ সম্পর্কে কখনও কখনও নিরাশাজনক কথাও শোনা যায়। কিন্তু এইরকম কোটি কোটি দিলীপ সিং আছেন, যাঁরা নিজের মত করে ভালো কাজ করেই চলেছেন। এই কাজগুলোই দেশকে উন্নতির দিকে এগিয়ে নিয়ে যায়, আর ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে দিলীপ সিং-কে গৌরাবান্বিত করা এবং তার জন্য আমাদের গর্ব বোধ করা খুবই স্বাভাবিক। সকল মানুষের সম্মিলিত প্রয়াসের ফলস্বরূপ আমাদের দেশ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলছে। সাধারণ পরিবারের লোকেরা যাঁরা ব্যাঙ্কের দোরগোড়ায় পৌঁছতে পারত না, তাঁদের জন্য মুদ্রা যোজনা-র মাধ্যমে সহজভাবে ঋণ পরিষেবা পৌঁছে দিয়েছি। যখন আমাদের মনে এরকম ভাবনা তৈরি হয় তখনই চোখের সামনে অত্যাশ্চর্য ছবি ভেসে ওঠে। যেমন মা যশোদা ও শ্রীকৃষ্ণের সেই কাহিনির কথা কে ভুলতে পারে – যখন বালক শ্রীকৃষ্ণ নিজের মুখগহ্বরে বিশ্ব ব্রহ্মাণ্ড দর্শন করিয়েছিলেন, তখন মা যশোদা বালক কৃষ্ণের ঐশ্বরিক ক্ষমতা উপলব্ধি করতে পেরেছিলেন। ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ পালনের ঘটনা আমাদের সেই অনুভূতিকেই আবার জাগিয়ে তুলেছে। পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার রব প্রতিটি ঘরেই শোনা যাচ্ছে। জনসাধারণের অংশীগ্রহণও বেড়ে চলেছে। এখনও পর্যন্ত এই বিষয়টি প্রচারমাধ্যম ব্যাপকভাবে তুলে ধরে নি। কিন্তু আমার বিশ্বাস, প্রচারমাধ্যম এই সব গ্রামে পৌঁছে সেখানকার মানুষের আশা ও আকাঙ্খার কথা সমগ্র দেশবাসীর কাছে তুলে ধরবে। এই কারণে সব থেকে বড় লাভ এটাই হবে, যে সমস্ত সরকারি-কর্মচারী এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত, তাঁরা এই ভেবে উৎসাহিত ও আনন্দিত হবেন যে তাঁরা এমন কিছু করেছেন, যা গ্রামের মানুষের জীবনে এক বিরাট পরিবর্তন এনে দেবে। এই সুখবরটি কৃষক, দরিদ্র, যুবক, মহিলা – সবার কাছে পৌঁছানো কি জরুরি নয়? নিজস্ব অধিকার পাওয়ার তথ্য তাঁদের অবশ্যই জানানো উচিত। সাধারণ মানুষের কার্যোপযোগী সঠিক ও ভালো বার্তাগুলি অধিক সংখ্যক মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার প্রতি আমাদের সচেষ্ট হওয়া উচিত। এটাও একরকমের সেবামূলক কাজ। আমি আমার মতো করে এই কাজ করার একটা ছোট্ট প্রয়াস করেছি। একজন সাধারণ লোক নিজের মোবাইল ফোনে ‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’ ডাউনলোড করে আমার সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারেন। এই অ্যাপ-এর মাধ্যমে অনেক ছোটো ছোটো কথা আমি ভাগ করে চলেছি। আমার কাছে আনন্দের বিষয়, এই অ্যাপের মাধ্যমে বহু মানুষ আমাকে অনেক কিছু জানাচ্ছেন। আপনিও আপনার মত করে এই প্রচেষ্টায় সামিল হোন। ১২৫ কোটি দেশবাসীর কাছে আমি পৌঁছতে চাই, আপনার সাহায্য ছাড়া এটা সম্ভব নয়। আসুন, আমরা সবাই মিলে সাধারণ মানুষের মঙ্গল ও প্রাপ্য অধিকারের কথা সাধারণ ভাষায় পৌঁছে দিয়ে তাঁদেরকে উৎসাহিত করি। আমার প্রিয় যুব-বন্ধুরা, গত ১৫-ই অগাস্ট লালকেল্লা থেকে আমি ‘Start up India, Stand up India’ বিষয়ে এক প্রারম্ভিক বক্তব্য রেখেছিলাম। আমাদের রাজ্যগুলি কি নিজেদের নতুন Start up, উৎপাদন ও কৃষি ক্ষেত্রে বা পরিষেবা প্রদানের ক্ষেত্রে নতুন উদ্ভাবনের মাধ্যমে দেশের যুবাদের জন্য নব দিগন্ত খুলে দিতে পারে না? Start up India, Stand up India যুবা বন্ধুদের জন্য এক বড় সুযোগ নিয়ে এসেছে। আমার যুবা-বন্ধুরা, ১৬ই জানুয়ারি ভারত সরকার Start up India, Stand up Indiaপ্রকল্প চালু করতে চলেছে। এবং এই প্রকল্পে দেশের সমস্ত আই-আই-টি, আই-আই-এম, কেন্দ্রিয় বিশ্ববিদ্যালয় এবং এন-আই-টি-তে পাঠরত যুবসম্প্রদায়কে ‘live connectivity’-র মাধ্যমে সংযুক্ত করা হবে। Start up প্রকল্প সম্পর্কে আমাদের বদ্ধমূল এক ধারণা রয়েছে যে এই প্রকল্পটি ‘Digital World’ কিংবা আই-টি কর্মীদের জন্য, কিন্তু তা নয়। আমরা একে ভারতের প্রয়োজনীয়তা অনুসারে নতুন ভাবে গড়তে চাই। আমাদের শহরের যুব-বন্ধুদেরই যে কেবল মেধাসম্পদ রয়েছে এই ধারণাটা ভুল। সমস্ত রাজ্য সরকারদের কাছে অনুরোধ, এই প্রকল্পটিকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। প্রিয় যুবা-বন্ধুরা, ১২-ই জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম-জয়ন্তী। আমার মতো এই দেশে কোটি কোটি মানুষ রয়েছেন যাঁরা স্বামী বিবেকানন্দের আদর্শে উদ্বুদ্ধ। ১৯৯৫ সাল থেকে ১২-ই জানুয়ারি, স্বামী বিবেকানন্দের জন্ম-জয়ন্তী-র দিনটি জাতীয় যুব উৎসব হিসেবে পালন করা হয়। এই বছর এই উৎসব ১২-ই জানুয়ারি থেকে ১৬-ই জানুয়ারি পর্যন্ত ছত্তিশগড়ের রায়পুরে অনুষ্ঠিত হতে চলেছে। ভারতের ক্ষুদ্র সংস্করণের একটি ছবি এখানে দেখা যাবে। যুব-ভারতের একটি প্রতিচ্ছবিও এখানে ফুটে উঠবে। এক প্রকারে এই উৎসব স্বপ্নের প্লাবন হয়ে দেখা দেবে এবং এক সংকল্পের অনুভূতি হবে। এই যুব-উৎসব সম্পর্কে আপনারা আমাকে কিছু পরামর্শ দিতে পারেন? যুবা-বন্ধুদের কাছে আমার বিশেষ অনুরোধ এই যে নরেন্দ্র মোদী অ্যাপের মাধ্যমে আপনারা সরাসরি আপনাদের পরামর্শ পাঠান। আমি আপনাদের মনের কথা জানতে ও বুঝতে চাই। তাহলে বন্ধুরা, আমি ‘নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ’-এর মাধ্যমে যুব উৎসব সম্পর্কে আপনাদের মতামতের অপেক্ষায় রইলাম। আমার মনে হয় এই প্রচেষ্টা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। দিলীপজী, আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। আপনি তো নিজেই এই বিষয়ে কাজ করছেন। এদের সমস্যা সম্পর্কে আপনি ভালোভাবেই অবগত আছেন আর আপনি নিজেও নিশ্চয়ই অনেক সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন। যখন সমাজে এই ধরনের মানুষের সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ হয়, তখন আমার মনে অনেক ধরনের ভাবনা আসে। আমাদের চিন্তা-ভাবনা অনুযায়ী তাঁদের সমস্যাগুলির প্রতি আমরা আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করি। কিছু মানুষ দুর্ঘটনাবশতঃ অঙ্গহানির শিকার হন। আবার কিছু মানুষ জন্মগতভাবে শারীরিক অক্ষমতার শিকার হন। তখন আমার মনে হয়, আমাদের দৃষ্টিতে হয়ত সে বিকলাঙ্গ, কিন্তু অভিজ্ঞতা বলে, ওর কাছে কিছু extra-power আছে, অতিরিক্ত শক্তি আছে। এই সব দেখে আমার মনে এক ভাবনা এসেছে যে আমাদের দেশে বিকলাঙ্গ শব্দের পরিবর্তে কেন দিব্যাঙ্গ শব্দের ব্যবহার করি না? এঁরা সেই মানুষ যাঁদের এমন ধরনের এক বা একাধিক অঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আছে, যার মধ্যে দৈবশক্তি আছে, যা আমাদের মত সাধারণ মানুষের শরীরে নেই। এই শব্দটি আমার খুব ভাল লেগেছে। দেশবাসীর কাছে আমার আবেদন, বিকলাঙ্গ শব্দের পরিবর্তে আমরা কি ‘দিব্যাঙ্গ’ শব্দের প্রচলন করতে পারি? আমার আশা, আমরা এই বিষয়ে ভবিষ্যতে চিন্তা-ভাবনা করতে পারি। সেই দিন আমরা ‘সুগম্য ভারত অভিযান’ শুরু করেছিলাম। ফিজিক্যাল ও ভার্চুয়াল – এই দুই ধরনের পরিকাঠামোর উন্নয়ন করে দিব্যাঙ্গ ব্যক্তিদের সুগম্য করার চেষ্টা করবো। হতে পারে বিদ্যালয়, হাসপাতাল, সরকারি অফিস বা বাস টার্মিনাস, রেল স্টেশনে ঢালু পথ বা র্যা্ম্প, সহজগম্য পার্কিং ও লিফ্‌টের ব্যবস্থা, ব্রেইল লিপি ইত্যাদি অনেক জিনিসের আমাদের প্রয়োজন। আর এই সব জিনিস সহজলভ্য করার জন্য এই বিষয়ে আমাদের প্রয়োজন উদ্ভাবনী শক্তির, নতুন প্রযুক্তির এবং সংবেদনশীল মনের। আপনিও আপনার মতো করে এতে অংশগ্রহণ করতে পারেন। আসলে প্রকল্প বানানো হয় সাধারণ মানুষের জন্য, গরীব মানুষের জন্য। সম্প্রতি ভারত সরকার এক প্রকল্প শুরু করেছে যাতে বিভিন্ন প্রকল্পের সুফল যোগ্য ব্যক্তির কাছে সহজে পৌঁছায়। আমাদের দেশে গ্যাস সিলিণ্ডারে ভর্তুকি দেওয়া হয়। এর জন্য কয়েক কোটি টাকা খরচ হয়, কিন্তু যোগ্য ব্যক্তির কাছে এই লাভ সময় মতো পৌঁছচ্ছে কি না তার কোনও হিসাব-নিকাশ ছিল না। সরকার এই বিষয়ে কিছু পরিবর্তন এনেছে। ‘জন ধন’ অ্যাকাউন্ট, আধার কার্ড ইত্যাদির সাহায্যে বিশ্বের সব থেকে বৃহৎ ‘Largest Direct Benefit Transfer Scheme’-এর মাধ্যমে উপকৃত ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ভর্তুকি পৌঁছানো। দেশবাসীকে এটা জানাতে পেরে আমি গর্বিত যে সব থেকে বড় Direct Benefit প্রকল্প সাফল্যের সঙ্গে চালু করার জন্য এটা ‘গিনেস বুক অফ ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস্‌’-এ স্থান পেয়েছে। ‘পহল’ নামে পরিচিত এই প্রকল্প খুব সফল হয়েছে। নভেম্বরের শেষ অবধি প্রায় ১৫ কোটি এল-পি-জি ব্যবহারকারী ‘পহল’ যোজনার মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। ১৫ কোটি মানুষের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি সরকারি টাকা পৌঁছচ্ছে। এর মধ্যে কোনও দালাল বা সুপারিশের প্রয়োজন নেই বা দুর্ণীতির সম্ভাবনাও নেই। আজকাল MNREGA প্রকল্পের মাধ্যমে গ্রামীণ মানুষের রোজগার সুনিশ্চিত করা হয়। এই প্রকল্পের প্রদত্ত অর্থের বিষয়ে নানান অভিযোগ আসছিল। এখন বেশির ভাগ জায়গায় এই টাকা সোজাসুজি শ্রমিকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে পৌঁছে যাচ্ছে। শিক্ষার্থীদের স্কলারশিপের অর্থ নিয়েও অনেক সমস্যা ছিল, অনেক অভিযোগ আসছিল। তাদের জন্যও এই ব্যবস্থা শুরু করা হয়েছে এবং এটা ধীরে ধীরে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। বিভিন্ন প্রকল্পে উপকৃতদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে সরাসরি এখনও পর্যন্ত প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা পৌঁছেছে। এক সাধারণ হিসাব অনুযায়ী ‘Direct Benefit Transfer’-এর মধ্যে প্রায় ৩৫ থেকে ৪০টি প্রকল্পকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। সঠিক অর্থে সাধারণতন্ত্র দিবস কি প্রতিটি নাগরিককে সংবিধানের সঙ্গে এবং সংবিধানকে প্রতিটি নাগরিকের সঙ্গে যুক্ত করতে পারবে? সংবিধানে কর্তব্যের ওপরেও সমান জোর দেওয়া হয়েছে। কিন্তু এই বিষয়ে বিশেষ আলোচনা হয় না। বিশেষ করে নির্বাচনের সময় ‘ভোটদান আমাদের পবিত্র কর্তব্য’ লেখা হোর্ডিং, বিজ্ঞাপন, দেওয়াল-লিখন ইত্যাদি দেখা যায়। ভোট দেওয়ার সময় কর্তব্যের কথা তো অনেক হয়, কিন্তু দৈনন্দিন জীবনেও কর্তব্যের কথা কেন হবে না? এই বছর আমরা যখন বাবাসাহেব আম্বেদকরের ১২৫তম জন্ম-জয়ন্তী পালন করছি তখন ২৬শে জানুয়ারি দিনটিকে সামনে রেখে স্কুল, কলেজ, গ্রাম, শহর ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনগুলিতে ‘আমাদের প্রাথমিক কর্তব্য’ বিষয়ে রচনা, বিতর্ক ও কবিতার প্রতিযোগিতার আয়োজন কি করতে পারি না? যদি ১২৫ কোটি ভারতবাসী কর্তব্যের প্রতি দায়বদ্ধভাবে এগিয়ে চলে, তাহলে এক ঐতিহাসিক ঘটনার সূচনা হবে। সর্বপ্রথম আমাদের এই বিষয়ে আলোচনা শুরু করা দরকার। আমার ‘mygov’ পোর্টালে তা পাঠাতে পারেন। আমাদের দেশের যুবশক্তির কর্তব্য বিষয়ে ধ্যান-ধারণা সম্বন্ধে জানতে আমি খুবই আগ্রহী। আমি একটি ছোটো প্রস্তাব রাখতে চাই। আমি কিন্তু সরকারি ব্যবস্থার কথা বলছি না। সাধারণ নাগরিক হিসাবে এই মহাপুরুষদের প্রতিকৃতি স্থাপনের ব্যাপারে আমরা যতটা উৎসাহী ও আবেগপ্রবণ, এগুলির রক্ষণাবেক্ষণের ব্যাপারে আমরা ততটাই উদাসীন। সমাজের জন্য, দেশের জন্য আমরা কি এটাকে আমাদের স্বাভাবিক অভ্যাসে পরিণত করতে পারি না? এই ২৬-শে জানুয়ারি, আসুন, আমরা সকলে মিলে মহাপুরুষদের সম্মানে নির্মিত এই সকল প্রতিকৃতিগুলির পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার ব্যাপারে সচেষ্ট হই। এর জন্য সাধারণ মানুষকে, নাগরিকদেরকে স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসতে হবে। আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, আমি আরও একবার আপনাদের সবাইকে নতুন বছর ২০১৬-র অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। আপনাদের সকলকে আন্তরিক ধন্যবাদ! প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী লালা লাজপত রাই-এর জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করলেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “বীর লালা লাজপত রাই-এর জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করি। তিনি ছিলেন এমন এক স্বপ্নদ্রষ্টা, যাঁর দেশপ্রেম ও আদর্শ মানুষকে উজ্জীবিত করতো”। সংশোধিত বাজেট প্রস্তাবটি অনুমোদিত হওয়ায় এই প্রকল্প দ্রুততার সঙ্গে সম্পূর্ণ করা যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার নতুন দিল্লিতে এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলি পর্যালোচনা করেন। বৈঠকে আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত বরিষ্ঠ কেন্দ্রীয় মন্ত্রীরা ছাড়াও মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, দিল্লির উপ-রাজ্যপাল শ্রী অনিল বাইজাল-সহ কেন্দ্রীয় সরকার, মহারাষ্ট্র এবং দিল্লি সরকারের উচ্চ পদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সূচকের অগ্রগতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। আলোচনায় নির্মাণ ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত অনুমোদন, চুক্তি বলবৎ, সম্পত্তি নথিভুক্তকরণ, নতুন ব্যবসা শুরু করা, বিদ্যুৎ সংযোগ, ঋণ সহায়তা সহ ঋণ পরিশোধের অক্ষমতার মতো বিষয়গুলি উত্থাপিত হয়। বিগত চার বছরে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সূচক অনুযায়ী ভারতের ১৪২তম স্থান থেকে ৭৭তম স্থানে উঠে আসার বিষয়টি নিয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশকে সহজ করে তোলার লক্ষ্যে গৃহীত সংস্কারমূলক পদক্ষেপগুলি রূপায়ণে যে সমস্ত বাধা-বিপত্তি রয়েছে, তা দূর করার পন্থা-পদ্ধতিগুলি নিয়ে আধিকারিকরা আলোচনা করেন। উদীয়মান ও প্রগতিশীল অর্থনীতি হিসাবে ভারতের জন্য এ ধরণের সহায়ক ব্যবস্থা গ্রহণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। বন্ধুগণ, ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের একটি সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে। ১৯১৭ সালে আচার্য জগদীশচন্দ্র বসু কলকাতায় দেশের প্রথম বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্র বোস ইনস্টিটিউট অফ ইন্ডিয়া গড়ে তোলেন। তাঁর উদ্বোধনী ভাষণেই আমরা বিজ্ঞানের উপযোগিতার একটি সংহত ভাবনার প্রতিফলন দেখতে পাই। তিনি বলেছিলেন, “এই প্রতিষ্ঠানটিতে আজ জাতির উদ্দেশে একটি নিছক গবেষণাগার রূপে উৎসর্গ করতে চাই না, আমি এটিকে একটি বিজ্ঞান মন্দির রূপে তুলে ধরতে চাই।” শত শত বৈজ্ঞানিকের নিরন্তর গবেষণা ও গভীর মৌলিক অন্তর্দৃষ্টির যোগফল হল ভারতীয় প্রযুক্তি উন্নয়ন এবং রাষ্ট্র নির্মাণ। আমাদের আধুনিক বিজ্ঞান মন্দিরগুলির মাধ্যমেই আমরা ভারতের বর্তমানকে সমৃদ্ধ ও নিরাপদ রাখার পাশাপাশি ভবিষ্যতকেও সুরক্ষিত রাখতে পারবো। বন্ধুগণ, আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রীজি আমাদের একটি স্লোগান প্রদান করেছেন, ‘জয় জওয়ান, জয় কিষাণ’। আজ থেকে কুড়ি বছর আগে পোখরানে পারমানবিক পরীক্ষার সাফল্যের পর তাঁর ঐতিহাসিক ভাষণে, আমাদের মহান প্রধানমন্ত্রী অটলজি রাষ্ট্র গঠনে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির গুরুত্ব অনুধাবন করে সেই স্লোগানে যোগ করেন, ‘জয় বিজ্ঞান’। আমি মনে করি এখন সময় এসেছে আরেক পা এগোনোর। আসলে বিজ্ঞানের লক্ষ্যসাধন দুটি উদ্দেশ্য পূরণের মাধ্যমে বাস্তবায়িত হয়। প্রথমটি হল গভীর কিংবা অন্তর্দৃষ্টিসম্পন্ন জ্ঞানের উন্মেষ। দ্বিতীয়টি হল, আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে সেই জ্ঞানের ব্যবহার। এই দুটি উদ্দেশ্য সাধনের জন্য আমাদের উদ্ভাবন এবং স্টার্ট-আপকে গুরুত্ব দিতে হবে। আমাদের সরকার নবীন বৈজ্ঞানিকদের উদ্ভাবন প্রবণতাকে সাহায্য করতে ‘অটল ইনোভেশন মিশন’ শুরু করেছে। বিগত চার বছরে পূর্ববর্তী চল্লিশ বছরের তুলনায় অনেক বেশি প্রযুক্তি-ভিত্তিক ‘বিজনেস ইনকিউবেটর’ স্থাপন করা হয়েছে। এখন শিল্পমহল দূরদৃষ্টিসম্পন্ন সময়ানুগ নির্দেশনার মাধ্যমে তাদের অর্থানুকূল্যে এবং স্টার্ট-আপগুলির সঙ্গে অংশীদারিত্ব করতে হবে। আমাদের বৈজ্ঞানিকদের দেশের সাধারণ মানুষের সুলভে স্বাস্থ্য পরিষেবা, গৃহনির্মাণ, নির্মল বায়ু, জল এবং শক্তি উৎপাদন, কৃষি উৎপাদন এবং পরিবেশ-বান্ধব খাদ্য প্রক্রিয়াকরণে নতুন নতুন উদ্ভাবনের কথা ভাবতে হবে। বিজ্ঞান যেখানে বিশ্বজনীন, প্রযুক্তি হওয়া উচিৎ স্থানীয় পরিবেশ ও পরিস্থিতি অনুসারে, স্থানীয় উপাদান-নির্ভর এবং স্থানীয় সমস্যা সমাধানকারী। সম্প্রতি সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী বিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রকাশনার সংখ্যার বিচারে ভারত এখন বিশ্বের অগ্রগণ্য পাঁচটি দেশের অন্যতম। এটা কম সাফল্য নয়, সমস্ত সংশ্লিষ্ট সব বৈজ্ঞানিক ও বিজ্ঞান বিষয়ে লেখকদের আমাদের আন্তরিক প্রশংসা জানাই। বন্ধুগণ, ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের তিরুপতি অধিবেশনে আমি সাইবার ফিজিক্যাল সিস্টেমের উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দেওয়ার অনুরোধ করেছিলাম। আমাদের ‘ডেমোগ্রাফিক ডিভিডেন্ড’কে অভূতপূর্ব চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী করে তোলার সম্ভাবনা এর রয়েছে। আমরা রোবোটিক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা অ্যানালিসিস ইত্যাদি ক্ষেত্রে গবেষণা, প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা উন্নয়নের মাধ্যমে এই সমস্যাকে অনেকের কর্মসংস্থানের সুযোগে রূপান্তরিত করতে পারি। সরকার ইন্টার-ডিসিপ্লিনারি সাইবার ফিজিক্যাল সিস্টেমের জাতীয় স্তরে গবেষণার জন্য ৩,৬০০ কোটি টাকারও অধিক অর্থ বিনিয়োগ মঞ্জুর করেছে। এই মিশনে রয়েছে গবেষণা ও উন্নয়ন, প্রযুক্তিগত উন্নয়ন, মানবসম্পদ, দক্ষতা, উদ্ভাবন, স্টার্ট-আপ ইকো সিস্টেম এবং নিবিড় শিল্প ও আন্তর্জাতিক সহযোগিতা। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার পরিচালিকা শক্তি হল তথ্য। বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকে কর্মরত আমাদের বৈজ্ঞানিকেরা কার্যকরী তথ্য নীতি প্রণয়নের মাধ্যমে তথ্য সৃষ্টি থেকে তথ্য প্রবাহ, তা থেকে তথ্য নিরাপত্তা, তা থেকে তথ্য শেয়ার করা এবং তা থেকে তথ্য ব্যবহার করার সঠিক উপায়গুলি নিয়মিত অভ্যাস করেন। বন্ধুগণ, ভারতে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের জন্য একটি নতুন দূরদৃষ্টিসম্পন্ন রোড ম্যাপের প্রয়োজন রয়েছে। এই লক্ষ্য নিয়ে আমরা সম্প্রতি ‘মুখ্য বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন পরামর্শদাতা পর্ষদ’ গঠন করেছি। এই পর্ষদ যথাযথ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি হস্তক্ষেপ নিয়ে নীতি নির্ধারণের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষ, সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের সহযোগিতায় বহুপক্ষীয় নীতি প্রণয়নকে বাস্তবায়িত করবে। সরকার শিক্ষা ক্ষেত্রে, বিশেষ করে উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রকে গুরুত্ব দিয়ে গুণগত মান উন্নয়নের প্রক্রিয়ায় হাত লাগিয়েছে। আমরা উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রকে অধিক স্বাধীনতা দিয়েছি। ইউজিসি ‘গ্রেডেড অটোনমি রেগুলেশন্‌স’ প্রণয়ন করে উন্নত দক্ষতাসম্পন্ন কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়গুলির জন্য কার্যকরী এবং আর্থিক স্বায়ত্তশাসন অনুমোদন করেছে। আমরা বিশ্বের শ্রেষ্ঠ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সক্ষম এমন প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার প্রক্রিয়া চালু করেছি। এই প্রচেষ্টার ফলে প্রতিযোগিতা বৃদ্ধি পাবে, বিনিয়োগ আসবে এবং উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির উৎকর্ষ বৃদ্ধি পাবে। আমরা ‘প্রাইম মিনিস্টার রিসার্চ ফেলো’ চালু করেছি। এই প্রকল্পের মাধ্যমে দেশের শ্রেষ্ঠ প্রতিষ্ঠানগুলির শ্রেষ্ঠ মেধাবী ছাত্রছাত্রীদের আইআইটি এবং আইআইএমসি-তে পিএইচডি-র জন্য সরাসরি নথিভুক্তির আমন্ত্রণ জানানো হবে। এই প্রকল্প উন্নতমানের গবেষণা এবং প্রধান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষকের অভাব দূর করবে। আমরা কিভাবে ভারতীয় যুবসম্প্রদায়ের মনে আগুনের ফুলকি জ্বালাতে পারি, যাঁরা গবেষণার ভিত্তি গঠন করেন এবং ভারতীয় বিজ্ঞানের নবজাগরণের সামিল হবেন তা দেখতে হবে। ভারত এখন নতুন প্রজন্মের সৃষ্টিশীল, টগবগে এবং প্রত্যয়ী মনের মানুষে পূর্ণ হয়ে উঠেছে। সরকার তাঁদের বিজ্ঞানের জয়যাত্রার মাধ্যমে নতুন ভারত গড়ে তোলার পরিবেশ তৈরি করে দিতে দায়বদ্ধ। আমরা বর্তমান ও ভবিষ্যতের সমস্ত চ্যালেঞ্জের মুখোমুখী হতে প্রস্তুত। এই ভারতে ভাবনা, জ্ঞান, প্রজ্ঞা ও কর্মের সমাহার। এই ভারত শক্তিশালী, প্রত্যয়ী, সমৃদ্ধ এবং প্রাণশক্তিতে ভরপুর। আমি আপনাদের সবাইকে সৃষ্টিশীল ও সমৃদ্ধ নতুন বছর ২০১৯-এর শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের অনেক অনেক ধন্যবাদ। সু-৩০ এমকেআই যুদ্ধ বিমান থেকে ব্রহ্মোস্‌ ক্ষেপণাস্ত্রের (এএলসিএম) সফলউৎক্ষেপণে আনন্দ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সফলউৎক্ষেপণের সঙ্গে যুক্ত সকলকেই তিনি অভিনন্দিত করেছেন। “সু-৩০ এমকেআই থেকে এএলসিএম-এর প্রথম সফল উৎক্ষেপণে আমি আনন্দিত। অনুষ্ঠানেপ্রদত্ত এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী বলেন যে সর্ব বরিষ্ঠ এবং সর্ব কনিষ্ঠআধিকারিকরা যেভাবে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময়ে মিলিত হয়ে থাকেন, তা সরকারিকাজকর্ম পরিচালনার ক্ষেত্রে একান্ত জরুরি। তরুণ আধিকারিকদের এই আলোচনা ও মতবিনিময়থেকে ইতিবাচক পদক্ষেপ গ্রহণেরও পরামর্শ দেন তিনি। পণ্য ও পরিষেবা করের রূপায়ণ এবং‘ভিম’ অ্যাপ-এর ব্যবহার সহ ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেন ব্যবস্থাকে উৎসাহিত করার জন্য তরুণআধিকারিকদের উদ্যোগী হতে বলেন প্রধানমন্ত্রী। নিজেদেরদপ্তরে সরকারি বৈদ্যুতিন বিপণন ব্যবস্থা চালু করারও তিনি আর্জি জানান আধিকারিকদেরকাছে। প্রধানমন্ত্রীর মতে, এই ব্যবস্থায় দালাল রাজের অবসান ঘটবে এবং এর সুবাদেসরকারি ব্যয়সাশ্রয়ও সুনিশ্চিত করা যাবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বৃহস্পতিবার (২০ জুন) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে এই মতবিনিময়ের জন্য ২ লক্ষের বেশি অভিন্ন পরিষেবা কেন্দ্র বা কমন সার্ভিস সেন্টার ও ৬০০ কৃষি বিজ্ঞান কেন্দ্রকে যুক্ত করা হয়। সরকারি প্রকল্প ও কর্মসূচিগুলির সুফলভোগীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রী এটি সপ্তম মতবিনিময় অনুষ্ঠান। ৬০০টিরও বেশি জেলার কৃষকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কৃষকরা দেশের ‘অন্নদাতা’। তিনি বলেন, দেশের খাদ্য নিরাপত্তার জন্য সমস্ত প্রশংসার দাবিদার কৃষকরাই। কৃষকদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর আলাপচারিতায় কৃষি ও সহযোগী ক্ষেত্র যেমন – জৈব চাষ, নীল (সমুদ্র) বিপ্লব, পশুপালন, উদ্যানপালন, পুষ্পোৎপাদন প্রভৃতি বিষয়ে মতবিময় হয়। চাষাবাদ ক্ষেত্রের রূপান্তর প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিগত ৪৮ মাসে কৃষি ক্ষেত্রের দ্রুত বিকাশ ঘটেছে। এই সময়ে দেশে রেকর্ড পরিমাণ দুগ্ধ, ফলমূল ও শাকসব্জি উৎপাদিত হয়েছে বলে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। সরকার কৃষি ক্ষেত্রের জন্য বাজেট বরাদ্দের পরিমাণ (২০১৪-১৯ পর্যন্ত) ১ লক্ষ ২১ হাজার কোটি টাকা থেকে দ্বিগুণ বাড়িয়ে ২ লক্ষ ১২ হাজার কোটি টাকা করেছে। একইভাবে, খাদ্যশস্যের উৎপাদন ২০১০-১৪ সময়ের ২৫ কোটি ৫০ লক্ষ টন থেকে বেড়ে ২০১৭-১৮’তে ২৭ কোটি ৯০ লক্ষ টন হয়েছে। কৃষকদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী জানান, কৃষক সমাজের সার্বিক কল্যাণ সুনিশ্চিত করতে সরকার মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড, কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের মাধ্যমে ঋণ সহায়তা, নিমের আস্তরণযুক্ত উচ্চ মানের কৃষি সার, ফসল বিমা যোজনার মাধ্যমে শস্য বিমার সুবিধা এবং প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিঞ্চাই যোজনার মাধ্যমে সেচ সুবিধা প্রদান করেছে। সরকার কৃষকদের উৎপাদিত ফসল সঠিক মূল্যে বিক্রির জন্য অনলাইন ব্যবস্থা ই-ন্যাম বা বৈদ্যুতিন জাতীয় কৃষি বাজার চালু করেছে। উত্তর-পূর্বকে জৈব চাষাবাদের হাব বা প্রধান কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়েছে সরকার। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় বিভিন্ন কৃষি প্রকল্পের সুফলভোগীরা জানান, কিভাবে এই প্রকল্পগুলি তাঁদের উৎপাদন বাড়াতে সাহায্য করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে সোমবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে যে সমঝোতাপত্র বা মউ স্বাক্ষরিত হয়েছে, সে বিষয়ে অবগত করা হয়। উল্লেখ করা যেতে পারে, গত তেসরা অক্টোবর নতুন দিল্লিতে এই মউ স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এখানকার ১৭ হাজার থেকে ১৮ হাজার প্রজাতির ফুলের গাছের মধ্যে ৭ হাজারেরও বেশি গাছে চিকিৎসামূলক উপাদান রয়েছে যেটি অনুমোদন করেছে আর্য়ুবেদ, উনানি, সিদ্ধা ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা ব্যবস্হা। সারা বিশ্বেই চিরাচরিত এবং বিকল্প স্বাস্হ্য পরিষেবা পুনরায় ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে চেষ্টার ত্রুটি নেই। এই সম্মেলন তাই আফ্রিকার বাইরে আফ্রিকান দেশগুলির সবচেয়ে বড় জমায়েতগুলির মধ্যে অন্যতম একটি হবে, যা উন্নত ভবিষ্যতের লক্ষ্যে ভারত ও আফ্রিকার উভয়ের গভীর আগ্রহের-ই প্রতিফলন| আফ্রিকায় এক বৃহৎবিনিয়োগকারী দেশ হল ভারত এবং ভারতের ত্রিশ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বিনিয়োগ আফ্রিকায় কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা নিচ্ছে| এতোগুলি দেশের রাষ্ট্রনেতাদের আসন্ন বৈঠকের মধ্য দিয়ে এবং সবাই সহযোগী হয়ে কাজ করলে, ভারত-আফ্রিকা শিখর সম্মেলন ভারত ও আফ্রিকার মধ্যেকার বন্ধনকে আরও শক্তিশালী করার অভিযাত্রায় এক দিশারী কর্মকান্ড হয়ে উঠতে পারে। সিঙ্গাপুরের উপ-প্রধানমন্ত্রী মিঃ থরম্যান সন্মুগরত্নম আজ এখানে সাক্ষাৎ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। সাক্ষাৎকারকালে সিঙ্গাপুরের প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট এস.আর.নাথন-এর জীবনাবসানেশ্রী মোদী আন্তরিক শোক ও সমবেদনা জানান ঐ দেশের নাগরিকদের। তিনি বলেন, সিঙ্গাপুরএক মহান সন্তানকে হারালো। ‘ দক্ষতা বিকাশ ’ এবং ‘ স্মার্ট নগরী ’ সহ ভারতের বিভিন্নউন্নয়ন কর্মসূচিতে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বর্তমান পরিস্হিতি সম্পর্কে মিঃসন্মুগরত্নম অবহিত করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। আজকের এই শুভ অনুষ্ঠানেযাকে সম্মানিত করা হয় আজ এই সভাঘরে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে সমাজের বিপুল সংখ্যকশিল্প ও ব্যবসার সঙ্গে যুক্ত রথী মহারথী, টি.ভি. এবং রেডিওতে যাঁরা দেখছেন ওশুনছেন- সব দেশবাসী, নতুন প্রজন্মের বন্ধুগণ, ভাই ও বোনেরা, আজ ইনস্টিটিউট অফ্চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট অফ্ ইন্ডিয়ার প্রতিষ্ঠাতা দিবস । আমার পক্ষ থেকে আপনাদের সকলকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা । আমার জন্যে এটিঅত্যন্ত আনন্দের বিষয় যে এই ঐতিহাসিক উপলক্ষে আমি আপনাদের মাঝে উপস্থিত হতে পেরেছি । তা হল সকল অ্যাকাউন্টকে ঠিক কিবা ভুল শংসাপত্র দেওয়ার, অডিট করার, এইঅধিকার শুধু এবং শুধু আপনাদেরই রয়েছে । যারাপৃথিবীতে ভারতের চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্ট তাদের বুদ্ধি এবং অনবদ্য ফাইনান্সিয়ালদক্ষতার জন্য সমীহ করা হয় । আজ আমার সৌভাগ্যহল একটি নতুন চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্সি কোর্স কারিকুলাম শুরু করার । আপনাদের ডাইনামিক কোর্স আর পরীক্ষার ক্রেডিবিলিটির পরিচয় এটাই । আমার আশা যে নতুন কোর্স এই পেশায় ভবিষ্যতে যাঁরা যোগ দেবেন তাদেরফাইনান্সিয়াল দক্ষতাকে আরও পোক্ত করবে । আপনাদের মধ্যে যারা পুরনো এবং অভিজ্ঞ তাঁরা শুনেছেন,কারও বাড়িতে আগুন লেগে গেলে, তাঁর সমস্ত সম্পত্তি পুড়ে গেলে, কথিত আছে সেইপরিবার নিজের ক্ষমতাতেই অত্যন্ত দ্রুত আবার বাড়ি বানায় । কষ্ট হয় কখনও কখনও কিন্তু তাঁরা আবার বসে বসে নিজের রোজগারের ব্যবস্থাকরে নেয় । নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেই সঙ্কট থেকে বেরিয়েআসে । কিন্তু পরিবারের দু ’ একজন সদস্য যদি নিয়ম ভেঙ্গে অনিয়মকরে তাহলে পরিবারের সর্বনাশ হয় । যারা হিসেবের খাতাশুধরানোর কাজে সিদ্ধহস্ত আমার সাথীরা, এভাবে যে কোনও দেশ বড় বড় সঙ্কটকালেওনিজেদের তুলে ধরতে পারে । বন্যা, ভূমিকম্প, যে কোনও সঙ্কটে দেশেরজনতা জনার্দনের সামর্থ্য থাকে, শাসন ব্যবস্থা ও জনগণ মিলেমিশে সঙ্কট থেকে বাইরেবেরিয়ে আসে । কিন্তু সেই দেশে কিছু মানুষের যদি চুরি করারঅভ্যেস গড়ে ওঠে, তাহলে সেই উঠে না দাঁড়াতে পারা পরিবারগুলির মতো দেশ এবং সমাজ ওউঠে দাঁড়াতে পারে না । নতুন আইন প্রণয়ণকরা হয়েছে পুরনো আইনগুলিকে আরও কঠোর করা হয়েছে । বিদেশে কালোটাকার লেনদেনের বিরুদ্ধে আমাদের পদক্ষেপ কতটা কার্যকরী হয়েছেতার সাক্ষী স্যুইস ব্যাঙ্কের সাম্প্রতিক পরিসংখ্যান থেকে পাওয়া যাচ্ছে । স্যুইস ব্যাঙ্কবলেছে যে ভারতীয়দের দ্বারা জমা ধনরাশি সর্বকালের সর্বনিম্ন মাত্রা ছুঁয়েছে । ত্রিশ বছর আগে ১৯৮৭ সালে স্যুইস ব্যাঙ্কগুলি বলা শুরু করেছে কোন্ দেশেরকত নাগরিক তাদের কাছে টাকা জমা রাখছে । গতবছরের যেরিপোর্ট এসেছে সেই অনুযায়ী ভারতীয়দের যে টাকা তাদের কাছে জমা রয়েছে, তার মধ্যে নতুননয় পুরনো গ্রাহকদের জমা টাকা ৪৫ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে । ২০১৪-য় যেদিন আপনারা আমার কাঁধে দায়িত্ব দিয়েছেন, সেই দিন থেকে, ২০১৪থেকেই এই হ্রাস পাওয়া শুরু হয়েছে । এই দেশে ৮ই নভেম্বরের কথা আপনাদের সবচাইতে বেশি মনে আছে । বিমুদ্রাকরণের সিদ্ধান্ত ও কালোটাকা এবং দুর্নীতির বিরুদ্ধে একটি অনেকবড় পদক্ষেপ ছিল । আমার প্রিয় বন্ধুগণ, আমি আগেই বলেছি,আপনাদের দেশভক্তি আমার দেশভক্তি থেকে কোনও অংশে কম নয় । যাঁরা দরিদ্রদের লুন্ঠন করেছেন তাদের গরিবদের ফেরৎ দিতেই হবে । তাছাড়া ৩৭,০০০থেকেও বেশি, ৩৮ হাজার থেকেও বেশি দুর্নীতিগ্রস্ত কোম্পানিকে ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করাহয়েছে । কালোটাকা লুকিয়ে রাখা, হাওয়ালা করা- না জানি আরও কতঅভিযোগ, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে । আইন ভঙ্গকারী কোম্পানিগুলির বিরুদ্ধে আগামীদিনে আরও কঠোর ব্যবস্থা নেওয়াহবে । আর আমি জানি, কালোটাকার বিরুদ্ধে এই পদক্ষেপ, ভুয়ো কোম্পানিগুলিকেবেআইনি ঘোষণার মধ্যে কোন্ রাজনৈতিক দলের কতটা ক্ষতি হতে পারে সে সম্পর্কে আমিঅবহিত । কিন্তু কাউকে না কাউকে তো দেশের স্বার্থে এই সিদ্ধান্তনিতেই হতো ! চার্টার্ডঅ্যাকাউন্টেন্টসদের জগত থেকে সমাগত আমার বন্ধুগণ, আজ আপনাদের মধ্যে এসেছি,প্রতিষ্ঠা দিবসে এসেছি । আমি আপনাদের অনুরোধ জানাই । এই চোর লুটেরা কোম্পানিগুলি নিশ্চয়ই কোনও না কোনও আর্থিক ডাক্তারের কাছেগিয়েছে । আমি ভালভাবে জানি, আপনাদের মধ্যে কারও কাছে হয়তো যায়নি । কিন্তু কোথাও তো গেছে, যাদের কাছে গেছে তাদেরকেও চিনে নেওয়ার প্রয়োজনপড়বে । আর যারা এধরণের মানুষদের হাত ধরেছেন, যারা এদের সহায়তাকরেছেন, যাঁরা এধরণের মানুষদের পথ দেখিয়েছেন, আপনাদের মধ্যে তাঁরা যদি থাকেন তাহলেতাদের চিনে নেওয়ার প্রয়োজন রয়েছে কি না ? বন্ধুগণ, আমাকেবলা হয়েছে যে আমাদের দেশে দুই লক্ষ বাহাত্তর হাজারেরও বেশি চার্টার্ডঅ্যাকাউন্টেন্ট রয়েছেন । আমি আপনাদের সামনে আরও কিছু তথ্য দিচ্ছি, কারণ আপনারাএই সব তথ্যের অর্থ দ্রুত বুঝতে পারেন, বোঝাতেও পারেন । আমাদের দেশেআনুমানিক দুই কোটির বেশি ইঞ্জিনিয়ার আর ম্যানেজমেন্ট গ্রাজুয়েট আছে । ৮ লক্ষের থেকে বেশি ডাক্তার আছেন । অর্থাৎ,যেগুলিকে ক্রিম প্রফেশন বলে দেখা হয়, খুব সম্মান দেওয়া হয় । এমন মানুষের সংখ্যাই আমাদের দেশে কোটি কোটি । যদি দেশের সবকটি বড় বড় শহরের বিশাল বিশাল অট্টালিকাগুলির সংখ্যা যোগকরা যায়, তাও কয়েক কোটিতে হবে । কেবল এটাই নয়,একটি তথ্য বলছে, প্রতিবার বিদেশে বেড়াতে যাওয়া লোকেদের তথ্য বলছে, দু কোটি ১৮লক্ষ মানুষ বিদেশে বেড়াতে গিয়েছিল । এটা কি সত্যি যে, দেশে মাত্র ৩২ লক্ষ মানুষ আছেন, যাদের রোজগার ১০ লক্ষেরচেয়ে বেশি ? আমার প্রিয়বন্ধুরা, দেশের তেতো সত্যি হল এটাই । এই সংখ্যা অর্থাৎ,দেশের মাত্র ৩২ লক্ষ মানুষ বলেন যে তাদের আয় দশ লক্ষের বেশি । আমি নিজে যেটা বুঝতে পারি যে, এদের মধ্যে বেশির ভাগ হল বেতন-ভিত্তিক,তাদের নির্দিষ্ট আয় যারা মাসিক বেতন তোলেন, সরকারি বেতন নেন । এছাড়া দেশের অবস্থা কি । সেই কারণে,ভাইবোনেরা, আমি আর তথ্যের কচকচিতে যেতে যাই না । কিন্তু এ থেকেই আপনি বুঝতে পারবেন যে, দেশে প্রতি বছর কোটি কোটি গাড়িকেনা হয় । তারপরেও যদি দেশের কোষাগারে নিজেরদায়িত্বটুকু পালন না করা হয়, সেটা খুবই চিন্তার বিষয় । আমি আরও তথ্যেরবদলে নিজের কথা আপনাদের বলতে চাই । আমাদের সিএভাইয়েরা… কোনও ব্যক্তি বা তার ক্লায়েন্টস তখনই ট্যাক্স দেন, যখন তার চারপাশেরপরিবেশ সদর্থক থাকে, তাকে সততার সাথে ট্যাক্স দেওয়ার জন্য অনুপ্রাণিত করে । তিনি যদি দেশেন যে, তার পরামর্শদাতা সত্য গোপন করার জন্য বলছে, তখন ভুলরাস্তায় চলতে গিয়ে সে ভয় পাবে না । তাই ভুল পরামর্শদেন যারা, তাদের চেনা আর তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াও খুব জরুরি । আর সেইজন্য আপনাদেরও কঠিন পদক্ষেপ নিতে হবে । মাত্র ২৫ জনই গড়বড় করেছিল ? আর, আমি শুনেছি,আপনাদের কাছে ১,৪০০ অভিযোগ অনেক বছর ধরে ঝুলে আছে । এক একটা মামলার সমাধান হতে বছরের পর বছর লেগে যাচ্ছে । তৎসত্ত্বেও সেই জমানায় যাদের আইন পেশা খুবভাল চলতো, তারাও দলে দলে আদালত ছেড়ে দেশের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়েন । কেবল মহাত্মা গান্ধী, সরদার প্যাটেল, ডাক্তার আম্বেদকর, জওহরলাল নেহরুইনয়, ডাক্তার রাজেন্দ্রপ্রসাদ, পণ্ডিত মদনমোহন মালব্য, বালগঙ্গাধর তিলক, মোতিলালনেহরু, সি রাজাগোপালাচারিয়া, মহেশচন্দ্র চৌধুরী, দেশবন্ধু চিত্তরঞ্জন দাস, সৈফুদ্দিনকিচলু, ভুলাভাই দেশাই, লালা লাজপত রায়, তেজবাহাদুর সপ্রু, আসফ আলি, গোবিন্দবল্লভপন্থ, কৈলাশনাথ কাটজু — গত কত নাম যারা দেশের জন্য নিজেদের জীবন উৎসর্গ করেছিলেন – যারা ওকালতির পেশায় ছিলেন । দেশভক্তির দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে দেশের স্বাধীনতার জন্য তাদের গোটা জীবনব্যয় করেছেন । এদের মধ্যে অনেকেই ছিলেন নেতা, যারা দেশেরসংবিধান রচনায় খুবই নির্ণায়ক ভূমিকা পালন করেছেন । আর ভাই ও বোনেরা, আমরা যেন ভুলে না যাই যে, এই মহাপুরুষদের বাদ দিলেদেশের ইতিহাস অসম্পূর্ণ থেকে যাবে । বন্ধুরা, আজ আমাদেরদেশ, আজ আমাদের দেশ ইতিহাসের এক গুরুত্বপূর্ণ মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে । এই ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে চার্টার্ডঅ্যাকাউন্টেন্টদেরই । আপনারা আমার ভাবনাটাকে বুঝুন । স্বাধীনতার আন্দোলনে ওকালতি জগতের মানুষেরা, আইনপেশার লোকেরা ভারতেরস্বাধীনতার অধিকারের জন্য নিজেদের প্রাণের বাজি ধরেছিলেন । সেদিনের মত আপনাদের প্রাণ বাজি রাখার কথা বলছি না । আপনাদের কারাগারের অন্তরালে যাওয়ারও দরকার নেই । আর আপনারা দেখুন, আপনাদের থেকে ভাল আর্থিকক্ষেত্রে উচ্চতায় পৌছানোর মজবুত রাস্তা আর কেউ দেখাতে পারবে না । কালো টাকা শেষ করার জন্য, দুর্নীতি শেষ করার জন্য মক্কেলদেরক্লায়েন্টসদের আমি আবারও বলছি । আপনাদেরক্লায়েন্টসকে সততার রাস্তায় নিয়ে চলার জন্য আপনাদেরই এগিয়ে এসে দায়িত্ব নিতে হবে । সাথীরা, চার্টার্ডঅ্যাকাউন্টসরা দেশের ইকনমি সিস্টেম-এর ভরসাদায়ক দূত । আপনারা সরকার এবং করদাতা নাগরিক ও কোম্পানিগুলির সঙ্গে ইন্টারফেস-এর কাজকরে থাকেন । কোম্পানি বড় হোক বা ছোট, আপনারা যাদেরঅ্যাকাউন্টের উপর স্বাক্ষর করে দেন, সরকারও তাকে বিশ্বাস করে, দেশের মানুষও তাকেবিশ্বাস করে । ওই স্বাক্ষর-এর পর এক নতুন জীবন শুরু হয়েযায়, বন্ধু । আমি সেই নতুন জীবনকেই আপনাদের দেখানোর জন্যএসেছি । আপনি সেই কোম্পানির হিসাব খাতায় স্বাক্ষর করে দিয়েছেনআর ব্যালান্স শিটে সই করে দিয়েছেন দেখলে সরকারি অফিসারও সেটা মেনে নেয় । কোম্পানি ফুলে ফলে বাড়ে, সামনে এগিয়ে যায় আর আপনিও ফুলে ফলে বাড়তেথাকেন । বিষয়টি এখানেই শেষ হয় না বন্ধু । তাঁরা তো সারা জীবনের সঞ্চয় আপনার একটিসইয়ের উপর ভরসা করে লগ্নি করেছিলেন । চেষ্টা করুন, ২০১৭ সালের পয়লা জুলাই তারিখেআপনাদের প্রতিষ্ঠা দিবস আপনাদের জন্য এক নতুন সুযোগ নিয়ে এসেছে । আপনাদের কাজের গুরুত্ব বুঝুন, আর হিসাবের রাস্তা নির্ধারণ করে দেখুন । সাথীরা, ট্যাক্স ‘ রিটার্ন ’ শব্দেরআলাদা আলাদা পরিভাষা আছে । কিন্তু আমার মনে ভাবনা হয় যে, যে ট্যাক্সদেশের উন্নয়নে লাগার কথা, সেটা কাজে লাগছে কি না । সেটাই আমার কাছে ট্যাক্স রিটার্ন । মূল্যবৃদ্ধি রুখতে সেটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে । এর দ্বারা এমন কোনও একজন মহিলা গ্যাস কানেকশন পেতে পারেন, যিনি সারা জীবনকাঠের আগুনে খাবার রান্না করেছেন । এই পয়সা থেকে কোনওএক বৃদ্ধ পেনসন পাবেন, যার ছেলেরা তার খরচ বহন করতে অস্বীকার করেছে । এই অর্থ থেকে নবযুবকের রোজগারের ব্যবস্থা হয়, যিনি সারা দিন এইজন্যহাড়ভাঙ্গা খাটেন যাতে সন্ধ্যারাতে ঘরে ফিরে পড়াশোনা সমাপ্ত করতে পারেন । এই টাকা সেই বাড়িগুলিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজে লাগে যেগুলিতে দেশস্বাধীন হওয়ার ৭০ বছর পরও বিদ্যুৎ পৌঁছয়নি । এখানে আসার সময় নীলেশজি আমাকে বলছিলেন, ‘ ব্যবসায়ীদেরযাতে সাহায্য হয়, তাঁরা যাতে ভালভাবে ব্যবস্থাটি বুঝতে পারেন, সেক্ষেত্রে আমরাসাহায্য করতে পারে !’ আমি তাদের শুভেচ্ছা জানাই, তাদের প্রতিকৃতজ্ঞতা জানাই যাঁরা এমনটি ভেবেছেন ! আপনারা মানুষেরকাছে পৌঁছোন, তাদের সচেতন করুন । তাদের সততারমূখ্যধারায় আসতে প্রেরণা জোগান । এভাবেই চার্টার্ডঅ্যাকাউন্টেন্ট-এর জগতের মানুষদের জন্য সরকার একটি নতুন সুযোগ এনে দিয়েছে । এখন থেকে সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করার জন্য এই পেশার নবীন প্রজন্মেরমানুষদের আহ্বান জানাই । আসুন, সরকার বিগতদিনে যে আইন পাশ করেছে- ‘ ইনসলভেন্সি অ্যাণ্ড ব্যাঙ্করাপ্টসিকোড ’ । একে বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে চার্টার্ডঅ্যাকাউন্টেন্ট জগতের মানুষদের অনেক বড় ভূমিকা রয়েছে । এই কোড অনুযায়ী যখনই কোনও কোম্পানি দেউলিয়া ঘোষিত হবে, আর নিয়ন্ত্রণইনসলভেন্সি প্র্যাকটিশনার রূপে এই একটি নতুন ক্ষেত্রে নিজের ক্যারিয়ার গড়ে তুলতেপারবেন । এটি একটি রোজগারের নতুন পথ যা সরকার আপনাদের সামনে খুলেদিয়েছে । কিন্তু আজকের পর থেকে আপনারা যে পথই বেছে নিন না কেনসিএ-র মানে হওয়া উচিত ‘ চার্টার ’ আর ‘ অ্যাক্যুরেসি ’ । আপনারা এখন থেকেই ৭৫ তম বর্ষপূর্তির জন্যপরিকল্পনা করুন । আর এই প্রতিষ্ঠানকে, তার চরিত্র ও খ্যাতিকেকোন উচ্চতায় নিয়ে যেতে চান সেই মানচিত্র তৈরি করে ফেলুন । এইসিদ্ধান্ত আপনাদেরই নিতে হবে ! আপনারা নিজেদের জন্য লক্ষ্য স্থিরকরুন যে কত মানুষকে সততার সঙ্গে কর জমা দিতে সাহায্য করে মূলধারায় নিয়ে আসবেন ! এইলক্ষ্যমাত্রা কী হবে সেই পরিসংখ্যান আপনাদের থেকে ভাল আর কে ঠিক করতে পারে । একথা ভাবুন যে আপনারা কিভাবে আপনাদের পেশায় প্রযুক্তির ব্যবহার বাড়াবেন । ‘ চাণক্য নেকহা কথা হ্যায় কালাতি ক্রমাৎ কাল এব ফলম পিবতি… ’ অর্থাৎকর্তব্যের সময় পেরিয়ে গেলে সময়েই তার সাফল্যকে শেষ করে দেয় । আর সেজন্যে সময়ের এই সুযোগকে হাতছাড়া করবেন না । একটু আগেই অরুণজী আপনাদের সঙ্গে কথা বলার সময় বলছিলেন, ভারত তথা বিশ্বেএমন সুযোগ আগে আর আসেনি । আপনাদের জীবনে এমন সুযোগ আগে কখনও আসেনি । এই সুযোগ হাতছাড়া করবেন না ! আমি আপনাদেররাষ্ট্রনির্মাণের মূলধারার সঙ্গে যুক্ত হওয়ার জন্য আমন্ত্রণ জানাই । আপনারা ভুলবেন না যে জীবনে এমন পেশা বেছে নিয়েছেন যে পেশা দেশের গোটাঅর্থব্যবস্থাকে বাঁচিয়ে রাখার সামর্থ্য রাখে । আমি আরেকবার এই মহান প্রতিষ্ঠান, তার শিক্ষককুল এবং উপস্থিত চার্টার্ডঅ্যাকাউন্টেন্টদের আইসিএআই-এর প্রতিষ্ঠা দিবসে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই । আর সারাদেশে এই অনুষ্ঠানকে ভিডিও মাধ্যমে যারা দেখছেন, দেশের নানাপ্রান্তে বসে, বিশ্বের নানা প্রান্তে বসে আমাদের যে চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টেরাএই অনুষ্ঠান দেখছেন- সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই । দেশের শক্তি সুরক্ষা নিশ্চিত করতে প্রধানমন্ত্রী ইন্ডিয়ান স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ লিমিটেডের ১.৩৩ এমএমটি বিশাখাপত্তনম স্ট্র্যাটেজিক পেট্রোলিয়াম রিজার্ভ ফেসিলিটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। এই প্রকল্পে ব্যয় হবে ১ হাজার ১২৫ কোটি টাকা। দেশে এটিই হ’ল সর্ববৃহৎ ভূগর্ভস্থ তেলের ভাণ্ডার। প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণপটনমে ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেড কোস্টাল ইন্সটলেশন প্রোজেক্টের শিলান্যাস করবেন। ১০০ একর জমির ওপর এই প্রকল্প নির্মাণে ব্যয় হবে ৫৮০ কোটি টাকা। ২০২০ সালের নভেম্বর মাসে এই প্রকল্পটি চালু হবে। সম্পূর্ণ স্বয়ংক্রিয় এবং দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি কোস্টাল ইন্সটলেশন প্রোজেক্ট চালু হলে অন্ধ্রপ্রদেশে পেট্রোলিয়ামজাত সামগ্রী সম্পূর্ণ সুরক্ষিত থাকবে। গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতিকে জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রী কৃষ্ণা – গোদাবরি অববাহিকায় ওএনজিসি-র এস-১ বশিষ্ট ডেভেলপমেন্ট প্রোজেক্টটির জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। এই প্রকল্পে ব্যয় হয়েছে ৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সংসদের সেন্ট্রাল হল-এ আইন প্রণয়নকারীদেরজাতীয় সম্মেলনেভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “প্রত্যেক রাজ্যে এমন কিছু জেলা আছে যেগুলি উন্নয়নমাপকাঠিতে রীতিমতো বলিষ্ঠ। আমরা ওদের থেকে শিক্ষা নিতে পারি এবং অনুন্নতজেলাগুলিতে তা কাজে লাগাতে পারি। প্রতিযোগিতামূলকএবং সমবায়-ভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রীয়তা দেশের পক্ষে অত্যন্ত মঙ্গল। জনসাধারণেরঅংশগ্রহণ সব সময়ই সাহায্য করে থাকে। একবার আমরা জেলারঅন্তত একটি দিকেরও পরিবর্তন ঘটানোর সিদ্ধান্ত যদি নিতে পারি, তাহলে আমরা অন্যান্যঅভাবগুলি পূরণের জন্য কাজ করার বেগ সঞ্চার করতে পারব। আমাদের জনবলরয়েছে, রয়েছে দক্ষতা এবং সম্পদ। আমাদের ব্রতের সঙ্কল্প নিয়ে কাজ করতে হবে আরইতিবাচক পরিবর্তন আনতে হবে। আমাদের লক্ষ্যই হল সামাজিক ন্যায় প্রতিষ্ঠা। আকাঙ্ক্ষামূলকজেলাগুলিতে কাজ করলে মানবসম্পদ উন্নয়ন সূচকে ভারতের মান বাড়বে। আইনপ্রণয়নকারীদের এই সম্মেলন লোকসভার অধ্যক্ষ শ্রীমতী সুমিত্রা মহাজনের এক প্রশংসনীয়প্রয়াস । প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (৭ মার্চ) নতুন দিল্লিতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জন-ঔষধি পরিযোজনা’র সুবিধাভোগী এবং জন-ঔষধি কেন্দ্রের দোকান মালিকদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। জেনেরিক ওষুধের ব্যবহার বৃদ্ধি এবং এ সম্বন্ধে সচেতনতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার ৭ই মার্চ, ২০১৯ তারিখে সারা দেশে ‘জন-ঔষধি দিবস’ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সারা দেশের ৫ হাজারেরও বেশি স্থান থেকে দোকান মালিক ও সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী জানান যে, কম দামে উন্নতমানের ওষুধের সরবরাহ নিশ্চিত করতে কেন্দ্রীয় সরকার দুটি বড় পদক্ষেপ নিয়েছে। প্রথমত, ৮৫০টি জরুরি ওষুধের দাম নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে এবং হার্টের স্টেন্ট ও হাঁটুর অস্ত্রোপচারের জন্য প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতির দাম কমানো হয়েছে। দ্বিতীয়ত, সারা দেশ জুড়ে একাধিক জন-ঔষধি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এই পদক্ষেপগুলি কেবল দরিদ্র ব্যক্তিদেরই নয়, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পক্ষেও বিশেষ সহায়ক হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। শ্রী মোদী জানান যে, জন-ঔষধি কেন্দ্রগুলিতে বাজার মূল্যের ৫০ থেকে ৯০ শতাংশ কম দামে ওষুধ পাওয়া যায়। তিনি আরও বলেন, গত সাড়ে চার বছরে ৫ হাজারেরও বেশি জন-ঔষধি কেন্দ্র খোলা হয়েছে। এই কেন্দ্রগুলিতে কেবল উন্নতমানের ওষধই পাওয়া যায় না, এখানে স্বরোজগারের ব্যবস্থা এবং নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হয় বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে সার্বিক রূপান্তর সম্বন্ধে সরকারের ভাবনা-চিন্তার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সরকার স্বচ্ছতার সঙ্গে কাজ করার পদ্ধতি অবলম্বন করে সমস্যার সমাধানে আগ্রহী। স্বাস্থ্যক্ষেত্রে পরিবর্তন নিয়ে আসতে এই ক্ষেত্রের সকল সংশ্লিষ্ট পক্ষ একত্রিতভাবে কাজ করছে বলে শ্রী মোদী জানান। তিনি বলেন যে গত সাড়ে চার বছরে দেশে ১৫টি নতুন এইম্‌স হয় তৈরি হয়েছে কিংবা তৈরি হচ্ছে এবং ডাক্তারি পঠন-পাঠনে ৩১ হাজার এমবিবিএস ও স্নাতকোত্তর স্তরে আসন বৃদ্ধি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময়ের সময়, জন-ঔষধি কেন্দ্রে উন্নতমানের ওষুধ পাওয়া যায় বলে সুবিধাভোগীরা আনন্দ প্রকাশ করেন। পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মৃত্যু বার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করলেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ এই অনুমোদন দেওয়া হয়। ২০০৬-এর এপ্রিল থেকে সংস্থাটি কাজ শুরু করে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার দ্বৈত কর আরোপ পদ্ধতি এড়াতে এবং আয়ের উপর করের পরিপ্রেক্ষিতে রাজস্ব ফাঁকি দেওয়ার কৌশল প্রতিরোধ করার জন্য ভারত ও বেলজিয়ামের মধ্যে একটি প্রোটোকল সংশোধনীতে সাক্ষর দানের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে। এই প্রোটোকলের সংশোধনী দুই দেশের মধ্যে বর্তমানে প্রচলিত কর সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়ের কর্মকাঠামোকে প্রশস্ত করবে। টেকনিক্যালইন্টার্ন ট্রেনিং প্রোগ্রাম (টিআইটিপি)-এর ক্ষেত্রে ভারত ও জাপানের মধ্যে একসহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাবে বুধবার অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এদিন অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার এইবৈঠকটি। আগামী১৬ থেকে ১৮ অক্টোবর কেন্দ্রীয় দক্ষতা বিকাশ ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রীর টোকিও সফরকালে এইসহযোগিতা চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মৌলানা আবুল কালাম আজাদ এবং আচার্য জে বিকৃপালনীর জন্ম জয়ন্তীতে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধার্ঘ্য নিবেদন করেছেন। এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন : “ভারতীয় ইতিহাসের দুই মহীরূহ মৌলানাআবুল কালাম আজাদ এবং আচার্য জে বি কৃপালনীর জন্ম জয়ন্তীতে তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাজানাই। পূর্ব সম্পাদিত চুক্তি ২০১৫-র ৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে কাবুলে “আফগান সংসদ ভাবন” নির্মাণের কাজ সম্পন্ন করার জন্য সংশোধিত হারে প্রকল্প ব্যয় ৯৬৯ কোটি টাকার বরাদ্দে বুধবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন দিয়েছে। আফগানিস্তানের জন্য একটি নতুন সংসদ ভবন নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করার প্রকল্প আফগানিস্তানের ঐতিহ্য ও মূল্যবোধকে লক্ষ্য রেখে প্রস্তুত করা হয়। আফিগানিস্তানের পুনর্নিমাণ ও পুনর্বাসনের কাজে এটা হল ভারতের তরফে গৃহীত প্রয়াসের অংশ বিশেষ। আফগানিস্তানে গণতন্ত্রকে শক্তিশালী করা ও পুনর্নিমাণে এই প্রকল্পটি ভারতের অবদানের একটি দৃশ্যমান প্রতীক। ভারত-আফগানিস্তান উন্নয়ন সহযোগিতার আওতায় আফগান সংসদ ভাবন নির্মাণের কাজ সম্পন্ন হয় ২০১৫-র ডিসেম্বরে এবং বর্তমানে এর শব্দ সংস্থাপন ব্যবস্থাপনা ও আসবাব-পত্র সহ সামান্য কয়েকটি চূড়ান্ত পর্যায়ের কাজ চলছে। ২০১৬-র ৩১ মার্চ নাগাদ এই সংসদ ভবনটি আফগান কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে। শ্রদ্ধা নিবেদনকালে শ্রী মোদী বলেন, “ধর্মগুরু প্রমুখ স্বামী মহারাজ শুধুমাত্র একজনসন্ন্যাসী ছিলেন না, তিনি ছিলেন একজন লোক সংগ্রাহক-ও। ধর্মগুরুপ্রমুখ স্বামী মহারাজ’কে প্রণাম জানাই। ১০০ শতাংশ পর্যন্তপ্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগেরবিষয়টিতে সরকার সম্মতি দেওয়ায়দেশের জনসাধারণের এক বিরাটঅংশকে অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডেসামিল করা যাবে বলে আশা করাহচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল ১৮ই ডিসেম্বর মহারাষ্ট্র সফর করবেন। তিনি মুম্বাইতে রিপাবলিক টিভি আয়োজিত ‘রিপাবলিক’ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন। রাজভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রখ্যাত কার্টুন শিল্পী আর কে লক্ষ্মণের ওপর লেখা ‘টাইমলেস লক্ষ্মণ’ শীর্ষক একটি বইয়ের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে রাজ্যের আবাস ও শহর এলাকার যোগাযোগ সম্পর্কিত কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প চালু করা হবে। কল্যাণে এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী দুটি গুরুত্বপূর্ণ মেট্রো করিডরের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এগুলি হ’ল, থানে – ভিওয়ান্দি – কল্যাণ মেট্রো এবং দহিসর – মীরা – ভায়ান্দের মেট্রো। এই দুটি করিডরের কাজ সম্পূর্ণ হলে জনপরিবহণ ক্ষেত্রে ব্যাপক উন্নতি হবে। প্রধানমন্ত্রী ৯০ হাজার ইউনিট ইডব্লিউএস এবং নিম্ন আয়ের জনগণের জন্য প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় আবাস প্রকল্পের সূচনা করবেন। শ্রী মোদী জনসভায় ভাষণ দেবেন। এরপর, প্রধানমন্ত্রী যাবেন পুণে। সেখানে তিনি পুণে মেট্রো ফেজ – ৩-এর ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। সেখানেও প্রধানমন্ত্রী এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। মউস্বাক্ষরের মূল উদ্দেশ্য হল- দু’পক্ষেরক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্রও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলিরমধ্যে সহযোগিতার প্রসার ওউন্নয়ন। এর ফলে, একটিনির্দিষ্ট কাঠামোর মধ্যে এবংঅনুকূল পরিবেশে পারস্পরিকশক্তি, বিপণনব্যবস্থা, প্রযুক্তি, নীতিইত্যাদি বিষয়ে বোঝাপড়ার মনোভাবগড়ে ওঠা সম্ভব। যে কোন ধরণের নতুন কাজের ক্ষেত্রে অনুমোদনের প্রতিবন্ধকতাগুলি দূর করা এবং পরবর্তী প্রজন্মের ‘ওপেন অ্যাক্সেস নেটওয়ার্ক’-এর উন্নয়নের ব্যবস্থা করা। তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী শ্রী ও পনিরসেলভম আজ এখানে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীরসঙ্গে শ্রী পনিরসেলভম-এর সাক্ষাৎকারকালে জলিকাত্তুর ওপর শীর্ষ আদালতের নিষেধাজ্ঞারবিষয়টি উঠে আসে। জলিকাত্তুর সাংস্কৃতিক গুরুত্ব ও তাৎপর্যের প্রশংসা সত্ত্বেওপ্রধানমন্ত্রী বলেন যে বিষয়টি এখন আদালতের বিচারাধীন রয়েছে। প্রসঙ্গততিনি একথাও জানান যে রাজ্য সরকার গৃহীত পদক্ষেপগুলিকে সমর্থন জানিয়ে যাবে তাঁরসরকার। মায়ানমারে ইয়াঙ্গনে শনি ও রবিবার দ্বন্দ্ব এড়ানো ও পরিবেশ সচেতনতা সংক্রান্ত বিশ্বজোড়াপ্রয়াস ‘সম্বাদ’-এর দ্বিতীয় অধিবেশন আয়োজিত হয়। সম্বাদেরদ্বিতীয় অধিবেশনে এক ভিডিও বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বজুড়ে নানা সমাজ এখনবিভিন্ন প্রশ্নের সম্মুখীন, যেগুলির মধ্যে আছে : জলবায়ুপরিবর্তনের মতো বিশ্বজোড়া সংকটের মোকাবিলা কিভাবে করা যায়? কিকরে শান্তি ও সম্প্রীতি নিয়ে বাস করার পাশাপাশি নিজেদের জীবনকে সুরক্ষিত রাখা যায়? তিনিবলেন, এইসব প্রশ্নের উত্তর অণ্বেষণের প্রয়াস যে মানবতার সুদীর্ঘতম চিন্তাভাবনার ঐতিহ্যের নেতৃত্বে হবে, যার শিকড়বিভিন্ন ধর্মে, সভ্যতায় এবং আধ্যাত্মিকতার বিভিন্ন ধারায় প্রোথিত, সেটাইস্বাভাবিক। প্রধানমন্ত্রীবলেন, তিনি হলেন “সেই সুপ্রাচীন ভারতীয় পরম্পরার সন্তান, যা কঠিন সব বিষয়েই সংলাপেদৃঢ় বিশ্বাসী”। তিনি বলেন, ‘তর্কশাস্ত্র’-এর মতো প্রাচীন ভারতীয় চিন্তাধারাটি, মতবিনিময় ও দ্বন্দ্ব এড়ানোর আদর্শহিসাবে সংলাপ ও বিতর্কের ওপর ভিত্তি করেই রচিত হয়েছিল। ভারতীয়পুরাণ থেকে শ্রীরাম, শ্রীকৃষ্ণ, ভক্ত প্রহ্লাদ ও ভগবান বুদ্ধ-এর উদাহরণ টেনেপ্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের প্রত্যেকের কর্মের উদ্দেশ্য ছিল – ধর্মকে উচ্চে তুলেরাখা, আর এটাই ভারতীয়দের সেই প্রাচীনকাল থেকে আধুনিক যুগ পর্যন্ত টিকিয়ে রেখেছে । প্রধানমন্ত্রীবলেন, ‘সম্বাদ’ বা ‘সংলাপ’ হ’ল, বিশ্বের নানা সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভেদ এবং নানাজাতি ও সমাজের মধ্যে দ্বন্দ্বের বীজ বপনকারী গভীরচারী ধর্মীয় রূপ ও সংস্কারকেছিন্ন-ভিন্ন করার একমাত্র উপায়। প্রধানমন্ত্রীবলেন, যদি মানুষ প্রকৃতিকে লালন-পালন না করে, তা হলে প্রকৃতি জলবায়ু পরিবর্তনেরমধ্য দিয়ে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে। পরিবেশ সংক্রান্ত বিধি ও নিয়ন্ত্রণ যে কোনওআধুনিক সমাজে আবশ্যক হলেও প্রকৃতিকে নেহাতই অপকৃষ্ট সুরক্ষা যোগায়, বলে মন্তব্যকরে প্রধানমন্ত্রী ‘সমন্বয়মূলক পরিবেশ সচেতনতা’র আহ্বান জানান। মানুষকেপ্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে হবে, প্রকৃতিকে শ্রদ্ধা করতে হবে, প্রকৃতিকেশোষণের উৎস হিসাবেই কেবল দেখলে চলবে না বলে প্রধানমন্ত্রী সুদৃঢ় মত ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন, আমাদের সমাজে শিক্ষকদের উচ্চ মর্যাদা দেওয়া হয়। তিনি সংবিধান রচনায় তাঁর জীবনের সকল কষ্ট ও যাতনা, অত্যাচার ও উপেক্ষার প্রতিশোধ নেওয়ার কোনও চেষ্টাই করেননি। সবাইকে যুক্ত করতে, সমাহিত করতে চেয়েছেন। দ্বিপাক্ষিক এইসম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে সহমত প্রকাশ করেন শ্রী মোদী এবং মিঃ অ্যাবট। শুধু তাই নয়, বিশ্বের উদ্ভাবনপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ভারতের এক বিশেষ ভূমিকা পালনেরও সুযোগ এনে দেবে এই মউস্বাক্ষরের ঘটনা। দেশের তরুণ উদ্ভাবক এবং স্টার্ট আপ শিল্পোদ্যোগীদের সঙ্গে আগামীকাল এক আলাপচারিতায় মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রী মোদী জানিয়েছেন যে আগামীকাল সকাল ৯-৩০ মিনিটে স্টার্ট আপ ও উদ্ভাবন জগতের তরুণদের সঙ্গে তিনি এক চিত্তাকর্ষক আলোচনায় মিলিত হতে চলেছেন। স্টার্ট আপ শিল্পোদ্যোগী হিসাবে নিজেদের উৎকর্ষ প্রমাণ করেছেন এমন অগ্রণী তরুণ উদ্ভাবকদের সঙ্গে সরাসরি আলাপচারিতায় মিলিত হওয়ার এটি এক বিশেষ সুযোগ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে একটি স্টার্ট আপ তথা উদ্ভাবনকেন্দ্র রূপে আত্মপ্রকাশ ঘটেছে ভারতের। ভবিষ্যতের উপযোগী মত ও চিন্তাভাবনা প্রকাশ করে ভারতীয় তরুণরা ইতিমধ্যেই এক বিশেষ স্বাতন্ত্রের স্বাক্ষর রেখেছেন। এই কারণে আগামীকালের এই অনুষ্ঠানে মিলিত হওয়ার জন্য তরুণ প্রজন্মকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। এর ফলে কলম্বিয়ায় ভারতের পরম্পরাগত ওষুধ ব্যবহার বৃদ্ধি পাবে এবং এর প্রচারও বৃদ্ধি পাবে। যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী মিসেস টেরেসা মে-রসঙ্গে মঙ্গলবার টেলিফোনে কথা বললেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী । নতুন দায়িত্বভার গ্রহণের জন্য প্রধানমন্ত্রী মে-কে অভিনন্দন জানান তিনি । বিশ্বের বিভিন্ন মঞ্চে ভারতকে সমর্থনজানানোর জন্য ঐ দেশের বিশেষ প্রশংসাও করেন তিনি । প্রত্যুত্তরে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদজানান মিসেস টেরেসা মে । কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আরও সিদ্ধান্ত নিয়েছে যে, ফসল সংগ্রহের জন্য অতিরিক্ত ১৬ হাজার ৫৫০ কোটি টাকা দেওয়া হবে। ভারত ও বাংলাদেশের সীমান্তবর্তী দুটি জেলার বিভিন্ন স্থানের মধ্যে ইন্টারনেট সংযোগ সহ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে দ্বিতীয় আন্তঃযোগাযোগ ব্যবস্থাটি আজ যৌথভাবে উৎসর্গ করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতী শেখ হাসিনা। এই উপলক্ষে ভারত-বাংলাদেশের এই ঐতিহাসিক মুহূর্তটিকে স্বাগত জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারতের সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানের হৃদ্য সম্পর্কের স্মৃতিচারণও করেন তিনি। সাম্প্রতিককালে সড়ক এবং ডিজিটাল ব্যবস্থা সহ ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পারস্পরিক সংযোগও যোগাযোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন ব্যবস্থার কথাও উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। বঙ্গবন্ধু উপগ্রহ উৎক্ষেপণে ভারত বাংলাদেশকে সমস্তরকম সাহায্যও সহযোগিতা করবে বলে প্রতিশ্রুতি দেন প্রধানমন্ত্রী। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখ, প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “অসাধারণ সাফল্য। ভালো খেলেছ। তোমরা আরও একবার আমাদের গর্বিত করেছ”। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা বুধবার ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে ‘শিক্ষাগত যোগ্যতা ও অধ্যয়ন মেয়াদের পারস্পরিকস্বীকৃতি’র সুযোগ তৈরি করতে চুক্তি স্বাক্ষরের অনুমোদন দিল| দু’দেশের অনুমোদিত,মঞ্জুরিকৃত এবং/অথবা স্বীকৃত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে পাঠরত ছাত্রছাত্রীদেরক্ষেত্রে তা কার্যকর হবে| ফ্রান্সের রাষ্ট্রপতির আসন্ন ভারত সফরের সময় এই চুক্তিস্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা যাচ্ছে| বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানের দেওয়া ‘মুদ্রা’ ঋণের ক্ষেত্রে আর্থিক ঝুঁকি কমাতে তহবিল গঠনের প্রস্তাবে সম্মতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। মায়ানমারের বাগান অঞ্চলে অবস্থিত আনন্দ মন্দিরটি আজ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। এই বৌদ্ধ মন্দিরটি দ্বাদশ শতকে নির্মিত। সমগ্র বাগান অঞ্চলে এটি হলদ্বিতীয় বৃহত্তম মন্দির। গত বছরের ভূমিকম্পের পর মন্দিরটির যেক্ষতি হয়েছিল, তার মেরামত ও সংস্কারের কাজও বর্তমানে চলছে। ভারতেরপ্রধানমন্ত্রীকে এই সংস্কার ও পুনর্নিমাণ প্রচেষ্টার একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনী আজএখানে ঘুরিয়ে দেখানো হয়। শ্রী মোদীমন্দিরের ভিজিটর্স বুক-এ স্বাক্ষরদানের পাশাপাশি আনন্দ মন্দিরের সংস্কারপ্রচেষ্টায় ভারতের অবদানকে স্মরণীয় করে তুলতে একটি ফলকের আবরণও উন্মোচন করেন। প্রসঙ্গতউল্লেখ্য, এশিয়ার বিভিন্ন দেশে বেশ কিছু বড় বড় সংস্কার ও সংরক্ষণের কাজে যুক্তরয়েছে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার বার্লিনে পৌঁছলেন চতুর্থ ভারত-জার্মানি আন্তঃসরকারআলোচনায় যোগ দিতে। এটি হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর দ্বিতীয় দ্বিপাক্ষিক জার্মানিসফর। জার্মানচ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল বার্লিনের উপকন্ঠে স্ক্লস মেসেবার্গ-এপ্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর জন্য এক অনাড়ম্বর নৈশ ভোজের আয়োজন করেন। দু’পক্ষেরমতবিনিময় প্রায় তিন ঘন্টা ধরে চলে এবং স্মার্ট সিটি, স্কিল ডেভেলপমেন্ট,পরিবেশ-অনুকূল শক্তি প্রভৃতি দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নানা বিষয়ে কথা হয় । অর্থনৈতিক সংস্কারেজিএসটি সহ ভারতের নানা প্রয়াস সে দেশের পক্ষ থেকে প্রশংসিত হয়। নেতৃবৃন্দআঞ্চলিক ও বিশ্ব সংক্রান্ত নানা বিষয়ে কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ইউরোপীয়গোষ্ঠীর মধ্যে ঐক্যবদ্ধ থাকার গুরুত্বের পুনরুক্তি করেন এবং বিশ্বেস্থিতিশীলতামূলক শক্তি হিসেবে এর তাৎপর্যের উল্লেখ করেন। এরআগে, স্ক্লস মেসেবার্গ-এ পৌঁছনোর পর প্রধানমন্ত্রী মোদী ভ্রমণার্থীর বইয়ে স্বাক্ষরকরেন। ২০১৫-১৬তে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুমৃত্যু হার ৯.৩ শতাংশ হারে কমেছে। ২০১৭তে ম্যালেরিয়া জনিত মৃত্যু ৭০ শতাংশ এবং আক্রান্তের সংখ্যা ৩০ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। রাষ্ট্রপতি ভবনের ঐতিহাসিক দরবার হল-এ ‘স্পিচেস অফ দ্য প্রেসিডেন্ট – ভল্যুম থ্রি’ এবং ‘প্রেসিডেন্সিয়াল রিট্রিট্‌স’ নামে দুটি বই প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের জন্মদিন পালনের অঙ্গ হিসেবে দরবার হল-এ এই অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়। রাষ্ট্রপতি শ্রী মুখোপাধ্যায়ের বয়স ৮০ বছর পূর্ণ হওয়ায় তাঁকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায় তাঁর রাজনৈতিক জীবনের বিভিন্ন সময়ে কেন্দ্রীয় সরকারের বহু উচ্চ পদে থেকে নানা গুরুদায়িত্ব পালন করে এসেছেন। তাঁর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে কাজ করার সুযোগ পেয়ে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করেন। মহিলাদের৫০এম রাইফেল শ্যুটিং প্রতিযোগিতায় স্বর্ণ পদক জয়ী তেজস্বিনী সাওয়ান্তকে অভিনন্দিতকরেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মহিলাদের ৫০এম রাইফেল শ্যুটিং প্রতিযোগিতায় সোনা জিতে নেওয়ার জন্যঅভিনন্দন জানাই তেজস্বিনী সাওয়ান্তকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকেমাদক সেবন, মাদক চালান প্রতিরোধে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি চুক্তিঅনুমোদন করেছে। যুব বিষয়ক ও ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারত ও মোজাম্বিকের মধ্যে সহযোগিতা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সাম্প্রতিকমোজাম্বিক সফরের সময় গত ৭ই জুলাই ২০১৬ তারিখে যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেসম্পর্কে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অবহিত করা হয়। দ্বৈতকর বিলোপ এবং আয়কর ফাঁকি এড়াতে ভারত ও কুয়েতের মধ্যে চুক্তি সংশোধনের বিষয়টি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে আয়োজিত বুধবারের বৈঠকে কর সংক্রান্ত বিষয়ে তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে স্বীকৃত আদর্শ মেনে চলার সংস্থান থাকা প্রোটোকলটি গ্রহণের ব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া হয়। কুয়েত থেকে কোনও ভারতীয়র সম্পর্কের তথ্যাদি উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে অন্যান্য আইনি সংস্থাকে দেওয়ারও সংস্থান রাখা আছে এই প্রোটোকলে। এক হৃদ্য, আন্তরিক এবংগঠনমূলক পরিবেশে দু’পক্ষই আলোচনা ও মতবিনিময়ে অংশগ্রহণ করে। 3. নে পি ত-এ তাঁর সরকারি কর্মসূচি ছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী সফর করেনঐতিহাসিক তথা সাংস্কৃতিক দিক থেকে গুরুত্বপূর্ণ বাগান ও ইয়াঙ্গন-এর বেশ কয়েকটিস্থান। ইয়াঙ্গন-এ অবস্থানকালে সেখানকার ভারতীয়বংশোদ্ভূত সম্প্রদায়ের এক অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী যোগদান করেন এবং আলোচনা ও মতবিনিময়েমিলিত হন প্রবাসী ভারতীয়দের সঙ্গে। 4. ২০১৬-র আগস্ট এবং অক্টোবর মাসে যথাক্রমে মায়ানমারের প্রেসিডেন্ট এবংস্টেট কাউন্সেলরের সফল ভারত সফরের পর থেকে যে সমস্ত বিষয়ে অগ্রগতি লক্ষ্য করাগেছে, দুই নেতাই সেগুলি মিলিতভাবে পর্যালোচনা করেন। দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রসারে এবং তাকে আরও গভীরে নিয়ে যেতে নতুন নতুনসুযোগ-সুবিধার পথ অনুসরণের পক্ষে বক্তব্য রাখেন দুই নেতাই। 6. সীমান্ত বরাবর নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথাও আলোচিত হয় দুই নেতার মধ্যে।সন্ত্রাস এবং উগ্রবাদী হিংসার বিভিন্ন ঘটনায় বিশেষ উদ্বেগও প্রকাশ করেন তাঁরা।সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ যে শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে খুবইবিপজ্জনক, একথার উল্লেখ করে দুই নেতাই যে কোন ধরনের সন্ত্রাসবাদী তৎপরতার কঠোরনিন্দা করেন। তাঁরা বলেন যে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেসংগ্রামে মূল লক্ষ্য শুধুমাত্রজঙ্গি বা জঙ্গি সংগঠন ও তাদের নেটওয়ার্কগুলিই নয়, কিন্তু একইসঙ্গে যে সমস্তরাষ্ট্র সন্ত্রাসবাদীদের অর্থের যোগান সহ অন্যান্যভাবে মদত দিয়ে চলেছে তারাও।সম্প্রতি, ভারতের অমরনাথ যাত্রীদের ওপর বর্বরোচিত জঙ্গি হামলার কঠোর নিন্দা করেমায়ানমার। এছাড়াও, সীমান্তের ওপার থেকে ভারতের ওপর যেভাবে হামলা চালানো হচ্ছে তারওবিশেষ নিন্দা করেন তাঁরা।অন্যদিকে, মায়ানমারের উত্তর রাখিনে অঞ্চলে সাম্প্রতিকজঙ্গি হামলার নিন্দা করে ভারত। ঐ ঘটনায় মায়ানমার নিরাপত্তা বাহিনীর বেশ কয়েকজনসদস্য প্রাণ হারিয়েছেন। ঐ একই নীতি ভারত অনুসরণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর বিশেষ প্রশংসাকরেন মিসেস সু কি। 9. নিকট প্রতিবেশী দেশগুলির নিরাপত্তা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেনৌ-নিরাপত্তা ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার মাত্রা আরও নিবিড় করে তুলতে সম্মতিপ্রকাশ করে দুই পক্ষই। 10. দু’পক্ষই সঙ্কল্প গ্রহণ করে যে ভারত ওমায়ানমারের মধ্যে পারস্পরিক বোঝাপড়ার ক্ষেত্রে যে সাফল্য অর্জিত হয়েছে, তাকেঅক্ষুণ্ণ রাখা হবে এবং দুটি দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের ক্রমবিকাশ ঘটানো হবেযাতে দুটি দেশই পরস্পরের সৎ ও নির্ভরযোগ্য বন্ধু হিসেবে ভবিষ্যতে সর্বদাই পরস্পরেরপাশে থাকতে পারে। এই প্রকল্পগুলির রূপায়ণ সম্পর্কিত খুঁটিনাটি আগামী কয়েকমাসের মধ্যে চূড়ান্ত করার পক্ষে মত প্রকাশ করেন দুই নেতাই। স্নাতকোত্তর পর্যায়ে এবং শিক্ষা ও গবেষণা ক্ষেত্রেমায়ানমারের প্রার্থীদের জন্য ভারত যেভাবে সহায়তা যুগিয়ে যাচ্ছে তার সপ্রশংস উল্লেখকরেন মিসেস সু কি এদিনের বৈঠকে । 15. মায়ানমারের বিচার বিভাগীয় আধিকারিক,সামরিক কর্মী এবং পুলিশ বাহিনীর দক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচি যেভাবে এগিয়ে চলেছে, তাতেবিশেষভাবে সন্তুষ্ট উভয় পক্ষই। নয়াদিল্লির বিদেশ সেবা সম্পর্কিত প্রশিক্ষণ কেন্দ্রটিতে মায়ানমারেরকূটনীতিকদের নিয়মিতভাবে প্রশিক্ষণদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়েছে। এই বন্দরটির কাজে যাতে দুটি দেশেরইদায়িত্ব যথাযথভাবে পালিত হয় সেই লক্ষ্যে পোর্ট অপারেটরের পদে নিয়োগ সংক্রান্ত একটিমউ সম্পাদনের প্রস্তাবে সহমত পোষণ করেছে ভারত ও মায়ানমার। দুই পক্ষই বিশেষ সন্তোষেরসঙ্গে উল্লেখ করে যে যেহেতু সড়ক নির্মাণের কাজ দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে, সেই কারণেপ্রকল্প রূপায়ণের সঙ্গে যুক্ত কর্মী ও আধিকারিকরা যাতে সহজেই প্রকল্প রূপায়ণেরস্থানে নির্বিঘ্নে পৌঁছতে পারেন তার ব্যবস্থা করা প্রয়োজন। একইসঙ্গে, সীমান্ত পথেজোড়িনপুই থেকে পালেতওয়া পর্যন্ত নির্মাণ সামগ্রী এবং অন্যান্য সাজসরঞ্জামপরিবহণেরও ব্যবস্থা করা হবে। তামু-কিগোন-কালেওয়া সড়ক পথের সেতুগুলির পুনর্নিমাণেরকাজ অনতিবিলম্বে শুরু হবে বলেই দুই নেতা মনে করেন। 19. ২০১২ সালে ৫০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণেরযে ঋণ সহায়তা সুবিধাজনক শর্তে ভারত মায়ানমারকে দিয়েছে, তার সাহায্যে প্রকল্পরূপায়ণের অগ্রগতির বিষয়টিও এদিন খতিয়ে দেখেন দুই নেতা। তাঁরা মনে করেন যে এই ঋণসহায়তার সাহায্যে গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে যে ব্যবহারিক পরিকাঠামো গড়ে তোলাসম্ভব হবে তা কৃষি এবং পরিবহণ ব্যবস্থায় বিশেষ গতি সঞ্চার করবে।দু’পক্ষেরসিদ্ধান্তক্রমে বিভিন্ন প্রকল্প রূপায়ণের কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পূর্ণ করার পক্ষেওমত প্রকাশ করেন তাঁরা। 20. এই সমস্ত পরিকাঠামো প্রকল্পেরসুযোগ-সুবিধা পূর্ণ মাত্রায় যাতে কাজে লাগানো যায়, সেই লক্ষ্যে সংযোগ ও যোগাযোগসম্পর্কিত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে গড়ে তোলা প্রয়োজন। এইপ্রসঙ্গে সীমান্ত বরাবর যাত্রী ও মাল পরিবহণ সম্পর্কিত মোটরযান চলাচলের লক্ষ্যেএকটি দ্বিপাক্ষিক চুক্তি সম্পাদনের গুরুত্বের বিষয়টিও তাঁরা তুলে ধরেন। 21. ভারত ও মায়ানমারের মধ্যে বিদ্যুৎ ওজ্বালানি-শক্তির যোগান সম্পর্কিত নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে আরও বেশি করে সমন্বয়সাধনেরগুরুত্বও উপলব্ধি করে দুই পক্ষই। মায়ানমারে পেট্রোলিয়ামজাত পণ্যের মজুত ও খুচরো বিপণনেরকাজে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারেরও প্রস্তাব করা হয় দুটি দেশের পক্ষ থেকে।প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রথম দফায় মায়ানমারে হাইস্পিড ডিজেল পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয় এমাসের ৪ তারিখে। 22. প্রচলিত এবং পুনর্নবীকরণযোগ্যজ্বালানি-ভিত্তিক যে বিদ্যুৎ প্রকল্পগুলি মায়ানমার ইতিমধ্যেই চিহ্নিত করেছে, তাতেপ্রকল্প ও প্রযুক্তি-ভিত্তিক সহায়তা প্রসারে ভারত সর্বতোভাবে প্রস্তুত বলে শ্রীমোদী জানান মায়ানমার কর্তৃপক্ষকে। মায়ানমারে সোলার পার্ক গড়ে তোলার সম্ভাব্যতারবিষয়টি সম্পর্কে সমীক্ষা চালানোর যে প্রস্তাব ভারত ইতিমধ্যেই পেশ করেছে তার বাইরেওমায়ানমারে সৌর সম্পদের সহজলভ্যতার বিষয়টি সম্পর্কেও সমীক্ষা চালানোর প্রস্তাবদেওয়া হয়েছে। ব্যয়সাশ্রয়ী জ্বালানি-শক্তি উৎপাদন ও তার ব্যবহার সম্পর্কেদ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করে দুই পক্ষই। স্থির হয়েছেযে এই বিষয়গুলি সম্পর্কে বিদ্যুৎ সম্পর্কিত এক যুক্ত স্টিয়ারিং কমিটির আগামী বৈঠকেবিস্তারিতভাবে আলোচনা করা হবে। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা গঠনের কাঠামোগত চুক্তিতেঅংশগ্রহণের জন্য ভারতের প্রস্তাব বিশেষভাবে বিবেচনা করা হবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছেমায়ানমার। শ্রী মোদী এর উত্তরে জানান যেদীর্ঘমেয়াদি এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন যা ভবিষ্যতে দু’দেশের নাগরিকদেরস্বার্থকেসুরক্ষিত রাখবে। ভারতের আর্থিক এবংপ্রযুক্তিগত সহায়তায় এই বিমানবন্দর উন্নয়নের কাজ হাতে নেওয়া হবে বলে স্থির হয়েছে।মায়ানমারের বিমান পরিবহণ নিয়ন্ত্রকদের ভারতে দক্ষতা বৃদ্ধি সম্পর্কিত প্রশিক্ষণেরযে প্রস্তাব রেখেছে ভারত, তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানায় মায়ানমার। মায়ানমারেরতামু থেকে মান্দালে পর্যন্ত রেল যোগাযোগ প্রকল্প গড়ে তোলার সম্ভাব্যতা খতিয়ে দেখারজন্য দু’পক্ষই তাদের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের নির্দেশ দিয়েছে। এই রেলপথ নির্মাণেরসম্ভাবনা সম্পর্কে সমীক্ষা চালানোর জন্য ভারত থেকে একটি টিম মায়ানমারে পাঠানো হবেবলেও দুই নেতার বৈঠকে স্থির হয়েছে। 28. অবৈধভাবে মানব পাচারের যাঁরাশিকার হয়েপড়েছেন, তাঁদের উদ্ধার ও পুনর্বাসনের জন্য প্রয়োজনীয় পন্থা-পদ্ধতি স্থির করারবিষয়টিকেও বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয় দুই নেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত বৈঠকে। এই প্রসঙ্গেমানব পাচার রোধে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে মউ সম্পাদনের বিষয়টিচূড়ান্ত করার জন্য যে প্রস্তাব পেশ করা হয়েছে, তাকেও স্বাগত জানান তাঁরা। এই সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচিটি ভারতের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্য এবংমায়ানমারের সীমান্তবর্তী অঞ্চলগুলির জনসাধারণের মধ্যে সংস্কৃতির আদান-প্রদানঘটানোর কাজে এক বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। নয়াদিল্লির ভারতীয় পুরাতত্ত্ব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে মায়ানমারের পুরাতত্ত্ববিদদের গবেষণা ও পঠনপাঠনের বিষয়টিতেও ভারত এখনপ্রস্তুত বলে জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। 30. বুদ্ধগয়ায় রাজা মিন্ডন এবং রাজা বাগিডরমন্দিরের পাথরের ওপর খোদাই করা কাজগুলির যথাযথ সংরক্ষণে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগযে কাজ শুরু করেছে তা ইতিমধ্যেই অনেকটাই এগিয়ে গেছে বলে বৈঠকে জানানো হয়।প্রকল্পটির কাজ এ বছরের ডিসেম্বরের মধ্যে সম্পূর্ণ হওয়ার কথা। এই মন্দির দুটিভারত-মায়ানমার সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের এক বিশেষ ধারক, বাহক ও স্মারক বলে মনে করে দুটিদেশই। 32. ই-ভিসা ছাড়া সমস্ত ধরনের গ্র্যাটিস ভিসারসুযোগ মায়ানমারের নাগরিকদের জন্য উন্মুক্ত করার যে সিদ্ধান্ত ভারত গ্রহণ করেছে,তাকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানিয়েছে মায়ানমার কর্তৃপক্ষ। 36. রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং অন্যান্য বহুপাক্ষিকমঞ্চগুলিতে একযোগে কাজ করে যাওয়ার জন্য তাদের অঙ্গীকারের কথা দৃঢ়তার সঙ্গেপুনর্ব্যক্ত করেছে ভারত ও মায়ানমার। সাধারণ স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বহুপাক্ষিক বিভিন্নবিষয়েই তাদের অবস্থানকে সংহত করে তুলতে বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে। দুটি দেশইমনে করে যে রাষ্ট্রসঙ্ঘকে আরও শক্তিশালী করে গড়ে তোলা প্রয়োজন এবং এই লক্ষ্যেনিরাপত্তা পরিষদের আশু সংস্কার একান্ত জরুরি। তাই, নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারেরপ্রশ্নে বিভিন্ন দেশের সরকারের মধ্যে যে আলাপ-আলোচনা হয়েছে তাকে স্বাগত জানানোরপ্রতিশ্রুতি দিয়েছে ভারত ও মায়ানমার – দুটি দেশই। সংস্কার-পরবর্তী সম্প্রসারিতরাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের স্থায়ী সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির জন্য ভারতেরপ্রচেষ্টাকে মায়ানমার যে সমর্থন জানায়, একথারও পুনরুচ্চারণ ঘটেছে ঐ দেশের পক্ষথেকে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য এবং তার নিরপেক্ষ ভূমিকার ওপরেবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে দুটি দেশই। 37. বহুপাক্ষিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিরসংস্কারসাধনের মাধ্যমে সেগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তোলার প্রয়োজনীয়তার বিষয়টিকেওবিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে ভারত ও মায়ানমার। এছাড়াও, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিকসিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রে উন্নয়নশীল দেশগুলির আরও বেশি মাত্রায় অংশগ্রহণ এবংতাদের নিজস্ব বক্তব্য পেশ করার বিষয়গুলিকেও গুরুত্ব দিয়েছেন দুই নেতাই। 38. সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে সৎ প্রতিবেশীসুলভ আচরণেরঅঙ্গীকার গ্রহণ করেছে ভারত ও মায়ানমার। দুটি দেশই মনে করে যে অগ্রগতি ও সমৃদ্ধিরকাজকে নিরন্তর করে তোলা প্রয়োজন এবং এই কাজে এগিয়ে যেতে হবে একযোগে। দুটি দেশ এবংসেখানকার জনসাধারণের মৈত্রী ও সম্প্রীতির পরিবেশ এবং তার বাতাবরণকে আরও জোরদার করেতুলতে সঙ্কল্পবদ্ধ ভারত ও মায়ানমার উভয়েই। ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর জন্মদিনে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। নতুন দিল্লিতে গতকাল সহকারি সচিবদের এক অনুষ্ঠানের সমাপ্তি অধিবেশনে ২০১৬ ব্যাচের আইএএস আধিকারিকরা প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সামনে তাঁদের ব্যক্তব্য পেশ করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহকারি সচিবদের এ ধরণের অনুষ্ঠান ও কর্মসূচি একেবারে নবীন ও প্রবীণ আধিকারিকদের পারস্পরিক মতবিনিময় এবং আলাপ-আলোচনার সুযোগ করে দেয়। আগামী দিনগুলিতে বিভিন্ন মন্ত্রকের সঙ্গে যুক্ত থাকার সময়ে নবীন এই আধিকারিকরা যে অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবেন, তা আত্মস্থ করে পরবর্তী সময়ে তার সদ্ব্যবহারের জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁদের উৎসাহিত করেন। সরকারের কাছ থেকে সাধারণ মানুষের যে প্রত্যাশা রয়েছে, তরুণ এই আধিকারিকদের তা বিবেচনায় রেখে সেগুলি পূরণ করার জন্য কর্মজীবনে নিজেদের সেরাটা দিতেও প্রধানমন্ত্রী তাঁদের পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী তরুণ এই আধিকারিকদেরকে নিজেদের কর্তব্য পালনের সময়ে আশেপাশে থাকা মানুষের সঙ্গে যোগাযোগ গড়ে তুলতে উৎসাহিত করেন। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তোলার মধ্যেই তাঁদের কর্তব্য ও উদ্দেশ্যগুলির সাফল্যপ্রাপ্তি নিহিত রয়েছে। শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীগণ, সিঙ্গাপুরে আমার বন্ধুগণ, সিঙ্গাপুরে বসবাসকারী প্রবাসী ভারতীয় সদস্যগণ, আপনাদের প্রত্যেককে নমস্কার! এটাই হ’ল – দুই সিংহের প্রভাব, মহিমা এবং গর্জন। সিঙ্গাপুরে আসা সর্দদাই আনন্দের। এটি এমন এক শহর যে, কখনও প্রেরণাদায়ক হিসাবে ব্যর্থ হয় না। সিঙ্গাপুর একটি ক্ষুদ্র দ্বীপরাষ্ট্র হতে পারে কিন্তু এর দিগন্ত ব্যাপক। ছোট্ট এই দেশটি আমাদের দেখিয়েছে যে, সাফল্য ও জনগণের শক্তির দিক থেকে আকার কোনও বাধাই নয়। একই সঙ্গে, সিঙ্গাপুরের বিভিন্ন রঙিন আস্তরণের মধ্যে এমন কিছু প্রাচীন বর্ণময় যোগসূত্র রয়েছে, যা দুই দেশকে এক সুতোয় বেঁধেছে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় ভারতের কয়েক শতাব্দী প্রাচীন যাত্রাপথ সিঙ্গাপুরকে জুড়েছে। মানবিক সম্পর্ক গভীর ও অক্ষুণ্ন। সিঙ্গাপুরে বসবাসকারী ভারতীয়দের মধ্যে এই সম্পর্ক এখনও জীবন্ত। আজকের এই সন্ধ্যা আপনাদের উপস্থিতি, আপনাদের প্রাণশক্তি, আপনাদের মেধা ও সাফল্যের উজ্জ্বল হয়ে উঠেছে। এই সিঙ্গাপুরে আপনারা ভারতের বৈচিত্র্যের প্রতিনিধি। আপনারা যদি একটি শহরেই ভারতের সমস্ত উৎসব, সপ্তাহ ধরে তার উদযাপন দেখতে চান, তা হলে সিঙ্গাপুর হ’ল আদর্শ স্থান। ভারতীয় খাবারের ক্ষেত্রেও এই আপ্তবাক্য সত্য হতে পারে। প্রধানমন্ত্রী লি-র সঙ্গে আমার নৈশভোজের কথা এখনও মনে পড়ছে। তামিল এখানকার সরকারি ভাষা। সিঙ্গাপুরের উদার মনোভাবের এটি একটি দৃষ্টান্ত যে, বিদ্যালয়ের শিশুরা আরও পাঁচটি ভারতীয় ভাষায় শিক্ষা গ্রহণ করতে পারছে। এই শহরে ভারতীয় সংস্কৃতির স্পন্দন দেখা যায়। ২০১৭-তে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস এই শহরের ৭০টি কেন্দ্রে আয়োজিত হয়েছিল। অর্থাৎ প্রতি ১০ বর্গ কিলোমিটারে একটি করে যোগ কেন্দ্রের আয়োজন করা হয়েছিল। বিশ্বের আর কোনও শহরে এত নিবিড়ভাবে যোগ চর্চা কেন্দ্রের আয়োজন করা হয়নি। শ্রীরামকৃষ্ণ মিশন ও শ্রীনারয়ান মিশনের মতো প্রতিষ্ঠান এখানে কয়েক দশক ধরে কাজ করে চলেছে। সমাজের প্রতি এদের সেবা, সেই মূল্যবোধগুলিকে প্রতিফলিত করে, যা ভারত ও সিঙ্গাপুরকে এক সুতোয় বেঁধেছে। এমনকি আজও ইতিহাসের ঐ অধ্যায়টি মহাত্মা গান্ধীএ চিরন্তন ও সর্বজনীন মূল্যবোধকে প্রতিফলিত করে। ভারত ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে রাজনৈতিক সম্পর্ক অত্যন্ত উষ্ণ ও নিবিড়। এই সম্পর্কের মধ্যে কোনও দাবি-দাওয়া বা সন্দেহ নেই। অভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গিতে এই সম্পর্ক এক স্বাভাবিক অংশীদারিত্ব। আমাদের প্রতিরক্ষা সম্পর্কও যথেষ্ট মজবুত। দুই দেশের সেনাবাহিনী এখন তাঁদের সম্পর্কের রজত জয়ন্তী উদযাপ্ন করছে। ভারতে সেদেশের সেনাবাহিনী ও বিমান বাহিনীর জন্য প্রশিক্ষণের বন্দোবস্ত হওয়ায় আমরা গর্বিত। আমাদের নৌ-জাহাজগুলি নিয়মিতভাবে একে অপরের দেশের যাওয়া-আসা করে। আপনাদের মধ্যে অনেকেই আমাদের নৌ-জাহাজগুলিতে চড়েছেন। আগামী পরশু চাঙ্গি নৌ-সেনা ঘাঁটিত্যে সিঙ্গাপুর নৌ-বাহিনীর জাহাজ ও ভারতীয় নৌ-বাহিনীর জাহাজগুলি পরিদর্শনের ব্যাপারে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমরা দুই দেশই আইনের শাসন, সমস্ত রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব-সমতা, বাণিজ্য ও যোগাযোগের ক্ষেত্রে অবাধ ও মুক্ত রাস্তাপথের স্বার্থে এক সুরে কথা বলি। অর্থনীতিই হ’ল এই সম্পর্কের হৃদ-স্পন্দন। বিশ্বের সঙ্গে যোগসূত্র গড়ে তোলার অগ্রভাগে রয়েছে আমাদের দুই দেশের এই অংশীদারিত্ব। ভারতের কাছে সিঙ্গাপুর বিনিয়োগের অগ্রণী উৎস ও গন্তব্য উভয়ই। সিঙ্গাপুরই প্রথম রাষ্ট্র যাদের সঙ্গে আমাদের প্রথম সুসংহত অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। এইভাবে ভারত ও সিঙ্গাপুর পরস্পরের সমৃদ্ধিতে অবদান রাখছে। এখন আমরা এক নতুন ডিজিটাল বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে অংশীদার হচ্ছি। এই মেধাবী যুবকরা ভারত, সিঙ্গাপুর ও আশিয়ান দেশগুলির মধ্যে উদ্ভাবন ও শিল্প স্থাপনের সেতু হয়ে উঠতে পারেন। অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর চালু করার মতো ব্যাপক কাঠামোগত সংস্কারের বছরটিতেও আমরা বিশ্বের দ্রুত বিকাশশীল অর্থনীতি হয়ে থেকেছি। আমরা এটাই চেয়েছিলাম। আমাদের অর্থনীতি আরও স্থিতিশীল হয়েছে। রাজস্ব ঘাটতি কমছে। চলতি খাতে ঘাটতি যথেষ্ট সন্তোষজনক। মুদ্রা ব্যবস্থাও স্থিতিশীল। বিদেশি মুদ্রা ভাণ্ডার রেকর্ড উচ্চতায় পৌঁছেছে। ভারতের ‘বর্তমান’ দ্রুত পাল্টাচ্ছে। এক ‘নতুন ভারত’ ধীরে ধীরে গড়ে উঠছে। অবশ্য, এর নেপথ্যে বহু কারণ রয়েছে। আমাদের আর্থিক সংস্কার অত্যন্ত দ্রুতগতিতে অগ্রসর হচ্ছে, যা আগে কখনও হয়নি। কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির গৃহীত ১০ হাজারের বেশি বিভিন্ন কর্মসূচির ফলে সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার ক্রমতালিকায় ভারত ৪২ ধাপ উঠে এসেছে। প্রায় ১ হাজার ৪০০ অপ্রাসঙ্গিক আইন বাতিল করা হয়েছে। ভারত এখন বিশ্বের অন্যতম উদার অর্তনীতিগুলির মধ্যে একটি। বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এখন প্রায় সমস্ত ক্ষেত্রেই বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। এই কাজ৯ সহজ ছিল না। কিন্তু সাফল্যের সঙ্গে এই কাজ সম্পন্ন হয়েছে। এরফলে, অর্থনীতিতে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধা তৈরি হয়েছে। আমাদের ব্যক্তিগত আয়কর ভিত্তি প্রায় ২ কোটি বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের পরিকাঠামো ক্ষেত্রের দ্রুত সম্প্রসারণ হচ্ছে। নতুন রেল লাইন পাতার কাজ দ্বিগুণ হয়েছে। অন্যান্য প্রকল্পগুলির মধ্যে রয়েছে – ১০টি গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দর, ৫টি নতুন প্রধান বন্দর, ১১১টি নদীপথ থেকে জাতীয় জলপথ হিসাবে ঘোষণা, ৩০টিরও বেশি লজিস্টিক পার্ক প্রভৃতি। বিগত তিন বছরে আমরা ৮- হাজারেরও বেশি মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থায় যুক্ত করেছি। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে আমরা বিশ্বের ষষ্ঠ বৃহত্তম উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠেছি। দূষণমুক্ত ও সুস্থায়ী ভবিষ্যতের লক্ষ্যে এটি আমাদের অঙ্গীকার। আমাদের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে আবার গতি সঞ্চার হচ্ছে। বিগত তিন বছরে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ লক্ষ্যণীয় পরিমাণে বেড়েছে। ২০১৩-১৪’র ৩৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলার থেকে ২০১৬-১৭’তে বেড়ে হয়েছে ৬০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। একই সঙ্গে অতিক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রেও বিশেষ নজর দেওয়া হচ্ছে। বিগত তিন বছরে ৩১ কোটি ৬০ লক্ষ নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। এখন ৯৯ শতাংশ ভারতীয় পরিবারের একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট আছে। উপভোক্তাদের কাছে ৫০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বেশি সরকারি অর্থ সরাসরি স্থানান্তরিত হয়েছে। এখন তাঁরা পেনশন ও বিমার সুযোগ-সুবিধা পেয়েছেন। বিশ্বের কোথাও ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার এত দ্রুত সম্প্রসারণ হয়নি। সারা ভারত জুড়ে ডিজিটাল উদ্যোগ পুরোদমে চলছে। এরফলে, ডিজিটাল লেনদেন দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে। ২০১৭-তে ইউপিআই-ভিত্তিক লেনদেন ৭ হাজার শতাংশ বেড়েছে। জানুয়ারিতে সবধরণের ডিজিটাল লেনদেনের পরিমাণ ছিল ২ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। শিশুদের মধ্যে উদ্ভাবনকে উৎসাহ দিতে ২ হাজার ৪০০টি টিঙ্কারিং ল্যাব চালু করা হয়েছে। ভারতে আগামী দুই দশকে নগরায়নের ঢেউ আসতে চলেছে। দেশের ৮০ কোটি যুবসম্প্রদায়ের সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি ও মর্যাদার সঙ্গে জীবনযাপনের জন্য আমরা দক্ষতা উন্নয়ন ও উচ্চ শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। সিঙ্গাপুরের অভিজ্ঞতা থেকে শিক্ষা নিয়ে আমরা দক্ষতা উন্নয়নের মতো আধুনিক প্রতিষ্ঠান স্থাপন করছি। চলতি অর্থবর্ষে আমাদের উচ্চতর শিক্ষা ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করতে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার মূল্যের একটি কর্মসূচি চালু করা হয়েছে। কয়েক দশক আগে সবুজ বিপ্লবের পরে এখন পুনরায় কৃষিক্ষেত্রকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। ২০২২ সালের মধ্যে আমরা কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্য নিয়েছি। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা প্রযুক্তি, রিমোর্ট সেন্সিং, ইন্টারনেট, ডিজিটাল অর্থ ব্যবস্থা, সহজশর্তে ঋণ সহায়তা, বিমা, মৃত্তিকার মানোন্নয়ন, সেচ ও যোগাযোগের ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। আমরা চাই, প্রত্যেক নাগরিক ২০২২ সালের মধ্যে স্বচ্ছল জীবন যাপন করুক। এর অর্থ, ঐ সময়সীমার মধ্যে প্রত্যেকের মাথার ওপর ছাদ বা ৫ কোটি বাড়ির ব্যবস্থা করা। গত মাসে আমরা এক মাইলফলক স্পর্শ করেছি। ৬ লক্ষ গ্রামের প্রতিটির সঙ্গেই বিদ্যুৎ সংযোগ স্থাপিত হয়েছে। প্রতিটি পরিবারকে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। জাতীয় স্বাস্থ্য বিমা প্রকল্প ‘আয়ুষ্মান ভারত’ এ বছরই শুরু হয়েছে। এই কর্মসূচির ফলে ১০ কোটি পরিবার বা ৫০ কোটি ভারতীয় ব্যাঙ্ক ৮ হাজার মার্কিন ডলার মূল্যের স্বাস্থ্য বিমা পাবেন। প্রকৃতপক্ষেই এটি বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্প। প্রকৃত ও সুস্থায়ী উন্নয়নের সঙ্গে জীবনযাপনের মানকেও যুক্ত করা হয়েছে। আমাদের ঐতিহ্যের সঙ্গে এর সম্পর্ক। সঙ্গত কারণেই প্রশাসনিক ব্যবস্থা ও নীতিতে পরিবর্তন করতে হচ্ছে। ভারতে আর্থিক সংস্কারের গতি ও দিশার ক্ষেত্রে সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা রয়েছে। ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য অর্থ ব্যবস্থাকে আরও সহজ-সরল করে তুলব। আমরা এক উদার, স্থিতিশীল ও অবাধ আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছি। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা সুষ্ঠু ও সামঞ্জস্যপূর্ণ চুক্তির পক্ষে, যা সমস্ত রাষ্ট্রের স্বার্থ পূরণ করবে। পরিশেষে বলতে চাই, সিঙ্গাপুরের কাছে ভারতের তুলনায় বেশি সুযোগ-সুবিধা আর কোথাও নেই। আমরা সঠিক দিশাতেই এগিয়ে চলেছে, তা এই সন্ধ্যা জানান দিচ্ছে। দুই সিংহ একসঙ্গে ভবিষ্যতের দিশায় পা বাড়াবে। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব গ্রহন করায় ডঃ মহাথির মহম্মদকে টেলিফোনে আজ (সোমবার) শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মালয়েশিয়ার বন্ধু মনোভাবাপন্ন মানুষের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য প্রধানমন্ত্রী মোদী সেদেশের প্রধানমন্ত্রীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। মোদী বলেন, ভারত ও মালয়েশিয়ার ঘনিষ্ঠ ও পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সম্পর্ক অভিন্ন মূল্যবোধ, আগ্রহ ও মানুষের সঙ্গে মানুষের চিরন্তন সম্পর্কের মজবুত ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। সমীক্ষা-সফর এবং জল সংক্রান্ত বিষয়ে প্রযুক্তি বিনিময়েরমধ্য দিয়ে এই সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তোলার প্রস্তাব করা হয়েছে । প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ শিক্ষক দিবসের প্রাক্কালে, ২০১৭-র জাতীয় শিক্ষক পুরস্কারপ্রাপকদের সঙ্গে মিলিত হন। কেন্দ্রীয় মানবসম্পদ উন্নয়নমন্ত্রী শ্রী প্রকাশ জাভড়েকর-ও এই অনুষ্ঠানে উপস্হিত ছিলেন। দেশে শিক্ষার মানোন্নয়নের ক্ষেত্রে তাঁদের অবদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী জাতীয় পুরস্কারপ্রাপক শিক্ষকদের অভিনন্দন জানান। শিক্ষার জন্য এবং একে তাঁদের জীবনের মন্ত্র করে তোলায়, তিনি তাঁদের নিষ্ঠার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, একজন শিক্ষক সারাজীবন ব্যাপি শিক্ষকই থাকেন। শিক্ষকদের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী পুরস্কারপ্রাপ্ত শিক্ষকদের প্রতি জনগোষ্ঠীকে সমবেত করে তাদের বিদ্যালয় উন্নয়নে অংশ করে নেওয়ার আহ্বান জানান। এছাড়াও তিনি ছাত্রছাত্রীদের, বিশেষ করে দরিদ্র এবং গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারীদের মধ্যে নিহিত শক্তির প্রকাশের লক্ষ্যে কাজ করার জন্য শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি স্কুলগুলি ও পারিপার্শিক অঞ্চলে ডিজিটাল পরিবর্তন আনার জন্য শিক্ষকদের উসাহ দেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতায় পুরস্কারপ্রাপক শিক্ষকরা তাঁদের স্কুলগুলিকে জ্ঞান ও উৎকর্ষের কেন্দ্র হিসাবে পরিণত করার অনুপ্রেরণামূলক কাহিনী বর্ণনা করেন। এবছর মানবসম্পদ উন্নয়ন মন্ত্রক জাতীয় পুরস্কারের জন্য শিক্ষকদের নির্বাচন সংক্রান্ত নীতি-নির্দেশিকা সংশোধন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিষয়ে সমঝোতায় অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলি স্থাপিত হলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে স্বাস্থ্য পরিচর্যা, চিকিৎসা শিক্ষা তথা প্রশিক্ষণে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। এর পর, প্রধানমন্ত্রী ফলকের আবরণ উন্মোচনের মাধ্যমে জম্মুতে ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ মাস কমিউনিকেশনের উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় আঞ্চলিক ক্যাম্পাসের নির্মাণ কাজের শিলান্যাস করবেন। বেশ কয়েকটি ট্যুইটে তিনি সাধারণ মানুষের উদ্দেশে লেখেন :- প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার বেঙ্গালুরুতে দশম সৌন্দর্য লহরী মহাসমর্পণ অনুষ্ঠানেউপস্থিত ছিলেন। সৌন্দর্য লহরী হল আদি শঙ্করাচার্য রচিত শ্লোকগাথার এক বিশেষসঙ্কলন। অনুষ্ঠানে উপস্থিত জনসাধারণ একযোগে সৌন্দর্য লহরীর শ্লোকোচ্চারণ করেন। এই উপলক্ষেপ্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সমবেত শ্লোক ও মন্ত্রোচ্চারণের পরিবেশে তিনি এক বিশেষউৎসাহ ও উদ্যম লাভ করেন। কয়েকদিনআগে, তাঁর কেদারনাথ সফরের অভিজ্ঞতার কথা বর্ণনা প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, ঐপ্রত্যন্ত অঞ্চলে এবং সেইসঙ্গে ভারতের অন্যান্য স্থানে আদি শঙ্করাচার্য তাঁর সীমিতজীবনকালে যে সমস্ত কাজ করে গেছেন, তা দেখে তিনি অভিভূত। বেদ ও উপনিষদের মাধ্যমেআদি শঙ্করাচার্য ভারতকে ঐক্যসূত্রে আবদ্ধ করেছিলেন বলে মন্তব্য করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীবলেন, আদি শঙ্করাচার্যের সৌন্দর্য লহরীর সঙ্গে সাধারণ মানুষ খুব সহজেই নিজেদেরমেলে ধরতে পারেন। শ্রী মোদী বলেন,বিভিন্ন মতাদর্শ ও চিন্তাভাবনারশ্রেষ্ঠ বিষয়গুলি অনুসরণ করেছেন আদি শঙ্করাচার্য। দেশে এ পর্যন্ত ২৭ কোটিরওবেশি এলইডি বাল্ব বন্টন করা হয়েছে বলে প্রসঙ্গত জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রীর মতে,এলইডি বাল্ব ব্যবহারের ফলে বিদ্যুতের বিলে উল্লেখযোগ্য সাশ্রয় ঘটেছে। শ্রী মোদীবলেন, ‘উজ্জ্বলা’ যোজনার আওতায়৩ কোটিরও বেশি এলপিজি সংযোগ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী গত দু’দিনে ফ্রান্সে তাঁর বিভিন্ন কর্মসূচির এবং প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের স্মৃতিসৌধে শ্রদ্ধার্পণের কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই স্মৃতিসৌধে যেতে পেরে তিনি গর্বিত হয়েছেন কারণ, প্রথম বিশ্ব যুদ্ধের সময় আত্মবলিদানকারী সাহসী ভারতীয় সেনানীদের কথা এই স্মৃতিসৌধ স্মরণ করায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্বকে আত্মবলিদানের এই মানসিকতাকে স্বীকৃতি জানাতে হবে, যা ভারতের কাছে অভিনব। তিনি বলেন, সাহসী এই সৈনিকরা না কেবল নিজের দেশের রক্ষায় সেই সঙ্গে ফ্রান্সের জন্যও কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে রক্ষা ক্ষেত্রে অবতীর্ণ হয়ে নিজেদের জীবন বিসর্জন দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্মৃতিসৌধে এসে তিনি এই বার্তাই দিতে চান যে, গোটা পৃথিবী যেন ভারত সম্বন্ধে ধারণা পাল্টায় কারণ, ভারত এমন এক দেশ যে অন্যদের জন্যও আত্ম বিসর্জন দিতে পারে। শ্রী মোদী বলেন, “ভারত কখনও অন্য দেশকে আক্রমণ করেনি এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তি রক্ষা অভিযানে বিপুল অবদান রেখেছে। তথাপি, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ জোটেনি। প্রধানমন্ত্রী আনন্দ প্রকাশ করেন যে, রি-ইউনিয়ন আইল্যান্ড ও গুয়াডালোপ সহ বিশ্বের বিভিন্ন অংশের দ্বীপ অঞ্চলগুলিতে ফরাসী ভাষায় অনুদিত হয়ে তাঁর ভাষণ সরাসরি সম্প্রচার হচ্ছে। তিনি জানান, এই দ্বীপগুলিতে প্রায় আড়াই লক্ষ ভারতীয় বসবাস করেন। ফ্রান্সে ভারতের বংশোদ্ভূত এমন অনেক মানুষ রয়েছেন, যাঁদের অতীত ভারতের যোগসূত্র সম্বন্ধে এখন কোনও ধারণাই নেই। শ্রী মোদী নতুন সরকারের প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনা, রান্নার গ্যাসে প্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তর, কয়লা ব্লক নিলামের মতো উদ্যোগগুলির সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি সম্পর্কে ফ্রান্স ব্যাপক আগ্রহ দেখিয়েছে। তাঁর সরকারের সমস্ত নীতির উদ্দেশ্যই হল, ভারতের যুব সম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা। তিনি বলেন, জনসংখ্যাগত বৈচিত্র্যই ভারতের সব থেকে বড় শক্তি। তিনি সেখানে গ্রিনফিল্ড বিমানবন্দরের পাশাপাশি, সিলা সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের শিলান্যাস করেন। দূরদর্শনের অরুণপ্রভা চ্যানেলেরও সূচনা করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অরুণাচল প্রদেশ হ’ল সূর্যোদয়ের ভূমি। এই রাজ্য ভারতের আস্থার প্রতীক। তিনি আরও বলেন, “আমি আজ এই রাজ্যের জন্য ৪ হাজার কোটি টাকারও বেশি বিভিন্ন প্রকল্প উদ্বোধনের সুযোগ পেয়েছি”। এই রাজ্যে আরও ১৩ হাজার কোটি টাকা মূল্যের একাধিক প্রকল্প রূপায়ণের কাজ চলছে। অরুণাচল প্রদেশ সহ উত্তর-পূর্বের অন্যান্য রাজ্যে উন্নয়নমূলক কাজকর্মের প্রেক্ষিতে তাঁর সরকারের ৫৫ মাসের সঙ্গে বিগত সরকারগুলির ৫৫ বছরের কাজের প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী সাধারণ মানুষকে কাজকর্মের অগ্রগতির সামগ্রিক তুলনা করতে বলেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, বর্তমানে যে গতিতে কাজ হচ্ছে, অতীতে তা হয়নি। তিনি বলেন, বিগত সরকার অরুণাচলকে কেবল উপেক্ষায় করেছে, আমরা এখানে এর পরিবর্তনের জন্য এসেছি। তিনি জোর দিয়ে বলেন, উত্তর-পূর্ব ভারতের উন্নয়ন ঘটলেই নতুন ভারত গড়ে ওঠা সম্ভব। একমাত্র উন্নয়নই বিভিন্ন অঞ্চল ও মানুষকে একত্রিত করে। এই উপলক্ষে শ্রী মোদী বলেন, আজ থেকেই রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটবে। বর্তমানে, ইটানগর যেতে হলে গুয়াহাটি বিমানবন্দরে নেমে সড়কপথে বা হেলিকপ্টারে পৌঁছতে হয়। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, তেজু বিমানবন্দর ৫০ বছর আগে নির্মিত হলেও কোনও সরকারই দেশের বাকি অংশের সঙ্গে এই রাজ্যের মানুষের জন্য যোগাযোগ-সাধনের পরিকল্পনাই করেনি। ছোট এই বিমানবন্দরটির সম্প্রসারণে প্রায় ১২৫ কোটি টাকা খরচ করা হচ্ছে। রাজ্যের মানুষকে বিমান পরিষেবা দিতে এই বিমানবন্দর প্রস্তুত বলেও তিনি জানান। উড়ান প্রকল্পের মাধ্যমে সুলভে রাজ্যের মানুষ বিমান ভ্রমণের সুযোগ পাবেন। কেবল বিমানবন্দরই নয়, রাজ্যের মানুষ নতুন রেল ও সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থা সুবিধা পেতে চলেছেন। অরুণাচল প্রদেশে শ্রী মোদী সিলা সুড়ঙ্গপথ নির্মাণ কাজের শিলান্যাস করেন। সব মরশুমের উপযোগী এই সুড়ঙ্গপথ নির্মাণের কাজ শেষ হলে তাওয়াং উপত্যকার সঙ্গে যাতায়াতের সময় ঘণ্টা খানেক হ্রাস পাবে। ৭০০ কোটি টাকা ব্যয়ে এই সুড়ঙ্গপথ নির্মাণ করা হচ্ছে। তিনি আরও বলেন, দ্বৈত ব্যবহারের উপযোগী বগিবিল রেল তথা সড়ক সেতু অরুণাচল প্রদেশকে মূল ভূখন্ডের আরও কাছাকাছি নিয়ে আসবে। রাজ্যের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে তাঁর সরকার হাজার কোটি টাকার একাধিক প্রকল্প রূপায়ণ করছে। তিনি জানান, বিগত দু’বছরে রাজ্যের ১ হাজার গ্রামকে সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে। ট্র্যান্স অরুণাচল হাইওয়ে নির্মাণের কাজ এগিয়ে চলেছে। উত্তর-পূর্বের রাজ্যগুলির রাজধানীকে যুক্ত করার যে কর্মযজ্ঞ চলছে, ইটানগরকে রেলের সঙ্গে ইতিমধ্যেই যুক্ত করা হয়েছে। নাহার লাগুন থেকে সপ্তাহে দু’বার অরুণাচল এক্সপ্রেস চলাচল করছে। “আমরা বিদ্যুৎ উৎপাদনে জোর দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গতকাল আমি সাধারণ মানুষকে উত্তর-পূর্ব ভারত ভ্রমণের বিভিন্ন ছবি শেয়ার করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলাম। কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই দেশ-বিদেশের অসংখ্য মানুষ হাজারেরও বেশি ছবি ট্যুইটারের মাধ্যমে শেয়ার করেছেন”। তিনি বলেন, আজ যে প্রকল্পগুলির সূচনা হয়েছে, তা কেবল রাজ্যের মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নই ঘটাবে না, সেই সঙ্গে পর্যটন ব্যবস্থার প্রসার ঘটাবে এবং কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করবে। প্রধানমন্ত্রী অরুণাচল প্রদেশে ৫০টি স্বাস্থ্য ও রোগী কল্যাণ কেন্দ্রেরও উদ্বোধন করেন। এ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির মাধ্যমে সরকার স্বাস্থ্য ও রোগী কল্যাণ কেন্দ্র গড়ে তুলছে। এই ধরণের কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে স্বাস্থ্য পরিষেবার মান বৃদ্ধি পাবে। প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা শুরু হওয়ার ১৫০ দিনের মধ্যে প্রায় ১১ লক্ষ দরিদ্র মানুষ লাভবান হয়েছেন। বাজেট ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি কর্মসূচির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৫ একরের কম জমি রয়েছে, এমন কৃষকরা বার্ষিক তিন কিস্তিতে ৬ হাজার টাকা পাবেন। রাজ্যে জৈব চাষাবাদ পদ্ধতিকে আরও জনপ্রিয় করে তুলতে তাঁর সরকার অরুণাচল প্রদেশ সরকারকে সবরকম সহায়তা দেবে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, এই চ্যানেলের মাধ্যমে রাজ্যের প্রত্যন্ত অঞ্চলের খবরও সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাবে। রাজ্যের জোটে-তে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সটিটিউট অফ ইন্ডিয়ার স্থায়ী ভবনেরও শিলান্যাস করেন। কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরের পদস্থ আধিকারিকদের উপস্থিতিতে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। তাঁর রাজ্যে খরা ত্রাণে যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে তাও তিনি সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেন এদিনের বৈঠকে। তিনি জানান, ত্রাণ সহায়তা হিসেবে রাজ্যের ৬১ লক্ষকৃষককে দেওয়া হয়েছে মোট ৪,৬৬৪ কোটি টাকা। এযাবৎকালের মধ্যে এটাই মধ্যপ্রদেশ সরকারের পক্ষ থেকে দেওয়া সবথেকে বেশি পরিমাণ ত্রাণ সহায়তা বলে তিনি উল্লেখ করেন। শ্রী চৌহান আরও জানান যে গত ১০ বছরে গৃহীত বিভিন্ন ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খরা মোকাবিলায় তাঁর রাজ্য এখন মোটামুটিভাবে প্রস্তুত। জল সংরক্ষণ ও মজুত করে রাখার জন্য প্রয়োজনীয় পরিকাঠামোও গড়ে তোলা হয়েছে। উপর্যুপরি দু’বছর বৃষ্টিপাতে ঘাটতি সত্ত্বেও রাজ্যের মাত্র ১১৩টি গ্রামে জলের যোগানের ব্যবস্থা করতে হয়েছে। এমনকি, জুনের শেষ পর্যন্ত যদি বৃষ্টি নাও হয়, রাজ্যের ৫০ হাজার গ্রামের মধ্যে মাত্র ৪০০ গ্রামে জলসঙ্কট দেখা দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। ‘প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিচাঁই যোজনা’ রূপায়ণের বিষয়টিকে তাঁর রাজ্য বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে বলেও প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি। ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’ সফল করে তোলার লক্ষ্যে মধ্যপ্রদেশে প্রাথমিক পর্যায়ে যে সমস্ত কাজ সম্পূর্ণ হয়েছে, বৈঠকে তা ব্যাখ্যা করেন শ্রী চৌহান। ক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প, তরল সারের ব্যবহার, মহাকাশ প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং কৃষিকাজের জন্য জলের উৎস সন্ধান সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে বৈঠকে মতবিনিময় করেন শ্রী মোদী ও শ্রী চৌহান। বৃক্ষরোপণ এবং নর্মদা নদীর তটবর্তী এলাকা সুরক্ষিত রাখার ওপরও জোর দেন দুই নেতা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী রবিবার ভাদোদরা সিটি কম্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার, ওয়াঘোদিয়া আঞ্চলিক জল সরবরাহপ্রকল্প এবং ব্যাঙ্ক অফ বরোদার নতুন সদর দফতর ভবনটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার(গ্রামীণ ও শহরাঞ্চলের) আওতায় সুফল গ্রহীতাদের হাতে বাসস্হানের চাবি-ও তুলে দেনতিনি। সুসংবদ্ধ পরিবহণকেন্দ্র, আঞ্চলিক জল-সরবরাহ কর্মসূচি, আবাসন প্রকল্প এবংএকটি ফ্লাইওভার সহ বিভিন্ন পরিকাঠামো ও উন্নয়ন প্রকল্পেরও এদিন শিলান্যাস করেনপ্রধানমন্ত্রী। মুন্দ্রা-দিল্লী পেট্রোলিয়াম উৎপাদন সম্পর্কিত একটি পাইপলাইন এবংএইচপিসিএল-এর একটি গ্রীনফিল্ড বিপণন টার্মিনাল প্রকল্পেরও এদিন ভিত্তিপ্রস্তরস্হাপন করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, তাঁর শৈশবাস্হাথেকেই ঘোঘা এবং দহেজের মধ্যে ফেরি সার্ভিসের কথা তিনি শুনে এসেছেন। যেহেতু তাঁরসরকার এখন সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে তাই এই নতুন ফেরি সার্ভিসটির আজসূচনা হল। পূর্ববর্তী বছরগুলির মতোইআগামী ৩১ অক্টোবর সর্দার প্যাটেলের জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে আয়োজিত হবে ‘ ঐক্যের জন্য দৌড়। ’ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রেলমন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভু প্রদত্ত ২০১৫-র রেল বাজেটের প্রশংসা করেছেন। রেলের পক্ষে এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত, যাতে কেবল রেলের কামরা এবং ট্রেন সংক্রান্ত আলাপ-আলোচনা থেকে বেরিয়ে এসে একটি সুসংহত রেল সংস্কারের ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি চমৎকৃত এই দেখে যে এই প্রথম প্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং রেলের আধুনিকীকরণের জন্য একটি সুস্পষ্ট দিশা দেওয়া হয়েছে। রেলকে ভারতের অগ্রগতি তথা জাতীয় অর্থনৈতিক বিকাশের মূল চাবিকাঠি করার সুস্পষ্ট প্রচেষ্টা এই রেল বাজেট। এই বাজেট গুরুত্ব আরোপ করেছে সাধারণ মানুষ, পরিষেবা, নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলিতেও বলে মত প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার (৩ অক্টোবর) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারতীয় রেল স্টেশন উন্নয়ন নিগম লিমিটেডের মাধ্যমে রেল স্টেশনগুলির পুনরুন্নয়নের প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়েছে। সরলীকৃত প্রণালী এবং ৯৯ বছর পর্যন্ত দীর্ঘ মেয়াদী লিজের মাধ্যমে এই নিগম নোডাল এজেন্সি হিসাবে রেল স্টেশনগুলির পুনরুন্নয়নের কাজ সম্পাদন করবে। মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের ফলে রেল স্টেশনগুলির জন্য বড় মাপের আধুনিকীকরণের পথ প্রশস্ত হবে এবং বিশ্বমানের পরিকাঠামো গড়ে উঠবে। রেল স্টেশনের আশেপাশের জমি ও খালি পড়ে থাকা জায়গার বাণিজ্যিক উন্নয়নের মাধ্যমে গুরুত্বপূর্ণ স্টেশনগুলির পুনরুন্নয়নের পরিকল্পনা করা হয়। রেল যাত্রীদের পাশাপাশি শিল্প সংস্থাগুলিও স্টেশন পুনরুন্নয়নের ফলে ব্যাপক লাভবান হবে। আন্তর্জাতিক রেল টার্মিনালগুলিতে যাত্রীদের জন্য যে ধরণের সুযোগ-সুবিধা থাকে, তা এবার দেশের স্টেশনগুলিতেও পাওয়া যাবে। একই সঙ্গে, স্থানীয় মানুষের জন্য রোজগারের বিপুল সুযোগও সৃষ্টি হবে বলে আশা করা হচ্ছে। সিভিল সার্ভিসেস ডে – এই বিশেষ দিনটিকে নিষ্ঠা ও কর্তব্যের পুনরুচ্চারণ বলে বর্ণনাকরেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ফলে, কারোর ত্রুটি-বিচ্যুতি অনেক সময় সংশোধনের অগোচরে থেকে যেত।কিন্তু বর্তমানে সাধারণ মানুষের মত ও ধারণা হল বেসরকারি ক্ষেত্রগুলি সরকারেরতুলনায় উন্নততর পরিষেবাদানে সক্ষম। এইভাবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নানা ধরনের বিকল্পব্যবস্থা গড়ে ওঠায় সরকারি আধিকারিকদের দায়িত্বও বৃদ্ধি পেয়েছে বহুগুণে।দায়িত্বেরএই মাত্রা বৃদ্ধি শুধুমাত্র কাজ করার সুযোগের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। তা এখন পৌঁছেগেছে এক চ্যালেঞ্জ নেওয়ার মতো অবস্থায়। নিয়ন্ত্রকের পরিবর্তে রূপায়কের ভূমিকায় যত তাড়াতাড়ি সরকারঅবতীর্ণ হতে পারবে, তত দ্রুত প্রতিযোগিতার চ্যালেঞ্জ সুযোগের পথ প্রসারিত করে তুলবে। প্রধানমন্ত্রীতাঁর ভাষণে আরও বলেন, কাজের কোন বিশেষ ক্ষেত্রে সরকারের যোগ বা সংযোগের অভাব যেমনঅনুভূত হয়, তেমনই কাজের বিশেষ ক্ষেত্রটিতে সরকারের উপস্থিতি যেন বোঝা না হয়েদাঁড়ায়। এ সম্পর্কে সরকারি আধিকারিকদের সতর্ক থাকতে বলেন তিনি। তরুণআধিকারিকদের উদ্ভাবন প্রচেষ্টার পথে শুধুমাত্র অভিজ্ঞতা যেন কোনরকম বাধা হয়ে নাদাঁড়ায় সে সম্পর্কে সতর্ক থাকার জন্যবরিষ্ঠ ও পদস্থ আধিকারিকদের পরামর্শ দেনপ্রধানমন্ত্রী। শ্রীমোদী বলেন, সরকারের অসামরিক সেবার আওতায় কাজ করে যাওয়ার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় শক্তিহল নিজের পরিচয়কে ব্যবহার না করা। “অগ্নি ৫-এরপরীক্ষা সফল হওয়ায় প্রত্যেক ভারতবাসী গর্বিত। এই ঘটনা আমাদের প্রতিরক্ষা প্রকৌশলকেযথেষ্ট শক্তিদান করবে। অগ্নি ৫-এর সফলপরীক্ষা ডিআরডিও এবং তার বিজ্ঞানীদের কঠোর পরিশ্রমেরই ফলশ্রুতি। উদয়পুরে একবাস দুর্ঘটনায় প্রাণহানির সংবাদে গভীর শোক ও দুঃখ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। নিহতদেরপরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর শোক ও সমবেদনা জানিয়েছেন তিনি। জনসাধারণ যদি মনে করেন যে তাঁরা নিশ্চিতভাবেই কোনও কিছু করবেন, তা হলে কোনওশক্তিই সেখানে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে না। জনসাধারণের শক্তিই একটি জাতিকে গড়ে তোলে। আমরা এক ‘নতুন ভারত’ গড়ে তুলতে আগ্রহী, যেখানে বর্ণ, সাম্প্রদায়িকতা এবংদুর্নীতির মতো রাজনীতির কোনও স্থান নেই। আমরা এমন এক ভারত গড়ে তুলতে চাই, যেখানেপ্রত্যেক নাগরিকেরই ক্ষমতায়ন সম্ভব। স্থির সংকল্পের জন্য সুরাট শহরটির যথেষ্ট নাম রয়েছে। সম্প্রীতিতে বিশ্বাসী এইশহর। সুরাটবাসীদের কাছে আমি আর্জি জানাই এ বছর জুন মাসে যোগ দিবস এবং অক্টোবরেঐক্যের জন্য দৌড়ে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করার জন্য। এই ধরণের ম্যারাথনের উদ্যোগ আয়োজন সাধারণ মানুষের স্বাস্থ্যের পক্ষেইতিবাচক। এক ‘নতুন ভারত’ গঠনই আমাদের সংকল্প। আফগানিস্তানে আট মাস বন্দী থাকার পর জেসুইট প্রিস্ট ফাদার অ্যালেক্স প্রেম কুমারের মুক্তি ভারত সুনিশ্চিত করেছে। গত ২২ ফেব্রুয়ারি ২০১৫ তারিখ, এই খবর জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, “আফগানিস্তানে বন্দীদশা থেকে ভারতীয় জেস্যুইট প্রিস্ট ফাদার অ্যালেক্স প্রেম কুমারের মুক্তি সুনিশ্চিত করে আমি আনন্দিত হয়েছি। ফাদার অ্যালেক্স প্রেম কুমারের সঙ্গে কথা হয়েছে। আট মাস বন্দী থাকার পর, ফাদার অ্যালেক্স প্রেম কুমারের নিরাপদে বাড়ি ফিরে আসার খবরটি তাঁর পরিবারকে জানানো হয়েছে”। এইউপলক্ষে কয়েকজন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী এবং বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন এদিনের অনুষ্ঠানে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী মোদী তাঁর ভাষণে উল্লেখ করেন তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন কিভাবেঅধ্যাপক স্বামীনাথনের সঙ্গে পরামর্শক্রমে সয়েল হেল্‌থ কার্ড কর্মসূচির সূচনা করাহয়। অধ্যাপকস্বামীনাথনের নিষ্ঠা ও অঙ্গীকারের বিশেষ প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী তাঁকেশুধুমাত্র কৃষি বিজ্ঞানী নয়, একজন ‘কিষাণ বৈজ্ঞানিক’ হিসাবে বর্ণনা করেন। তিনিবলেন, অধ্যাপক স্বামীনাথনের বিশেষত্ব হল বাস্তবের প্রকৃত পরিস্থিতি অনুযায়ী তিনিকাজ করে যান। তাঁর সরলতাও সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। দেশেরকৃষিক্ষেত্রের চ্যালেঞ্জগুলির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, কৃষি প্রচেষ্টার এইসাফল্যকে পূর্ব ভারতেও নিয়ে যাওয়া উচিৎ, আর তা সম্ভব করে তুলতে বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তির প্রয়োগ একান্ত জরুরি। কাঙ্খিতলক্ষ্যে পৌঁছতে আধুনিক বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি এবং কৃষি বিষয়ে জ্ঞানের সমন্বয় সম্ভব করেতুলতে হবে। কয়েকটি রাজ্যের দৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, ভারতের প্রত্যেকটিজেলারই নিজস্ব এক কৃষি পরিচিতি থাকা প্রয়োজন। বিপণন প্রক্রিয়াকে উৎসাহিত করতে এবংগুচ্ছ শিল্পের আদর্শকে অনুসরণ করে গুচ্ছ কৃষি ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তা বিশেষভাবেসাহায্য করবে। ডঃএম এস স্বামীনাথন প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গির বিশেষ প্রশংসা করেতাঁকে ধন্যবাদ জানান। এই ব্যাঙ্কের এ বছরের বৈঠকের মূল আলোচ্য বিষয় হল ‘পরিকাঠামো ক্ষেত্রে অর্থলগ্নি : উদ্ভাবন ও সহযোগিতা’। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সুসংহত বিনিয়োগ ব্যবস্হার মাধ্যমে এক সুস্হায়ী ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকারি ও অন্যান্য সংগঠনের কর্তাব্যক্তিরা বৈঠকে তাদের মতামত ও দৃষ্টিভঙ্গি বিনিময় করবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিশিষ্ট নাট্যকার ও হাস্যরসশ্রষ্টা শ্রী তারক মেহতার প্রায়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের বিভিন্ন প্রদেশে উদযাপিত উৎসব উপলক্ষে দেশবাসীকেশুভেচ্ছা জানিয়েছেন। “আজ ভারতেরমানুষ সারা দেশে বিভিন্ন ধরনের উৎসব উদযাপন করছেন। এইসব পবিত্র উৎসব উপলক্ষে আমিদেশের সমস্ত মানুষকে শুভেচ্ছা জানাই। মকর সংক্রান্তিউপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাই। এই দিন যেন প্রত্যেক মানুষের জীবনে আনন্দ এবং সমৃদ্ধিনিয়ে আসে। এইসব এবং অন্যান্য উৎসব যা সারা ভারতজুড়ে উদযাপিত হচ্ছে, তা আমাদের জীবনকে রঙিন এবং সুখী করে তুলুক। এই বৈচিত্র্যইভারতের সবচেয়ে বড় শক্তির জায়গা। “পণ্ডিত দীনদয়ালজী আমাদের কাছে অনুপ্রেরণা স্বরূপ। নিঃস্বার্থ সেবাই ছিল তাঁর জীবনের ব্রত। দরিদ্র মানুষের সেবায়, জাতির সেবায় তিনি ছিলেন নিবেদিত প্রাণ”। একজন রাজনৈতিক সংগঠক হিসেবেও পণ্ডিত দীনদয়ালজীর অনুসরণযোগ্য দক্ষতার কথা আমি স্মরণ করি। তিনি এমন কিছু কার্যকর্তাদের গড়ে তুলেছিলেন, যাঁরা জাতির সেবায় নিজেদের জীবন উৎসর্গ করে গেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার, ভারত সরকারের বিভিন্ন দপ্তরে কর্মরত ৮০ জনেরও বেশি অতিরিক্তসচিব এবং যুগ্ম সচিব পর্যায়ের আধিকারিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে মিলিত হন এবং আলাপচারিতাকরেন। এটি ছিল এই ধরনের চতুর্থ বৈঠক। এইআলাপচারিতার মধ্যে আধিকারিকরা উদ্ভাবন এবং প্রশাসনিক কাজকর্মে দলগত সংহতি,স্বাস্থ্য পরিষেবা, স্বাস্থ্য-শিক্ষা, কৃষি, জলসম্পদ, ই-গভর্নেন্স, কর প্রশাসন এবংঅভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থা, সহজে ব্যবসার সুযোগ-সুবিধা, অভিযোগ নিষ্পত্তিএবং শিশুদের অধিকারের মতো বিভিন্ন বিষয়ে তাঁদের অভিজ্ঞতা বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীসংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের প্রশাসনিক কাজকর্মে উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করার আহ্বানজানান। চেয়ারম্যানআসিয়ানবাণিজ্য উপদেষ্টা পরিষদ; প্রথমেই, বিলম্বেরজন্য আমি ক্ষমাপ্রার্থী। রাজনীতির মতো বাণিজ্যিক কাজকর্মেও সময় এবং তা সঠিকভাবে অনুসরণকরা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু কখনও কখনও আমাদের সকল রকম প্রচেষ্টা সত্ত্বেও তামেনে চলা সম্ভব হয়ে ওঠে না। ফিলিপিন্স-এ প্রথম সফরে এসে এবং ম্যানিলায় উপস্থিতথাকতে পেরে আমি খুশি। · আমাদের দু’দেশেরই রয়েছে এক বিরাট সংখ্যক তরুণ এবং আশা-আকাঙ্ক্ষায়উদ্দীপ্ত জনসাধারণ যাঁরা খুবই পরিশ্রমী এবং উদ্ভাবনী প্রচেষ্টায় বিশেষভাবে আগ্রহী। শুধু তাইনয়, ভারতের মতো ফিলিপিন্স-এর সরকারও পরিবর্তনের প্রত্যাশী। আজ সকালে আসিয়ানশীর্ষ বৈঠকের সূচনা অনুষ্ঠানে রামায়ণ অবলম্বনে ‘রাম হরি’ নামে একটি নৃত্যনাট্যেরঅসাধারণ পরিবেশন আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। ভারত এবং আসিয়ানভুক্ত দেশগুলির জনসাধারণকিভাবে ঐতিহাসিক দিক থেকে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয়েছেন তাই তুলে ধরা হয়েছে এইপরিবেশনাটিতে। আমার সরকারের ‘পুবের জন্য কাজ করো’ নীতির কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছেএই অঞ্চলটি। আসিয়ানভুক্ত প্রত্যেকটি দেশের সঙ্গে আমাদের রয়েছে এক ব্যতিক্রমীরাজনৈতিক তথা জনসাধারণের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক। আমাদের অর্থনৈতিক এবং বাণিজ্যিকসম্পর্ককেও আমরা সেই উচ্চতায় নিয়ে যেতে আগ্রহী। ভারতেররূপান্তর প্রক্রিয়ার কাজ এগিয়ে চলেছে নজিরবিহীনভাবে। এক সহজ, কার্যকর এবং স্বচ্ছপ্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে প্রশাসন ও পরিচালনকে যাতে আরও ভালো ও দক্ষ করেতোলা যায়, তা নিশ্চিত করার জন্য দিন-রাত অহরহ পরিশ্রম করে চলেছি আমরা। একটিদৃষ্টান্ত এখানে তুলে ধরা যাক : টেলিযোগাযোগসংক্রান্ত স্পেকট্রাম, কয়লা খনি অঞ্চল ও অন্যান্য খনিজ পদার্থ, এমনকি বেসরকারিবেতার চ্যানেল সহ বিভিন্ন প্রাকৃতিক সহায়সম্পদের নিলাম ব্যবস্থাকে আমরা উদার করেতুলেছি। আর্থিক লেনদেনএবং কর ব্যবস্থায় আমরা এক অভিন্ন পরিচিতি ব্যবস্থা চালু করেছি যার ফলাফল ইতিমধ্যেইসকলে লক্ষ্য করেছেন। এই সমস্ত প্রচেষ্টা এবং তার সঙ্গে উচ্চ মূল্যের ব্যাঙ্ক নোটেরবিমুদ্রাকরণআমাদের অর্থনীতির এক বিশাল ক্ষেত্রকে ব্যবহারিক করে তুলেছে। নতুনকরদাতাদের আয়কর রিটার্ন পেশের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণেরও বেশি। সাধারণ মানুষের কাছে সহজেই পৌঁছে যাওয়ারলক্ষ্যে আমরা আশ্রয় নিয়েছি প্রযুক্তির। নাগরিকদের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষার জন্য আমরাচালু করেছি ‘মাই গভ’ নামে এক অনলাইন ব্যবস্থা যার মাধ্যমে প্রায় ২০ লক্ষের মতোকাজ-পাগল নাগরিকদের কাছ থেকে আমরা নীতি ও কর্মসূচি সংক্রান্ত বিভিন্ন ধরনের চিন্তাভাবনা,পরামর্শ এবং পন্থা-পদ্ধতির হদিশ লাভ করতে পেরেছি। ‘ন্যূনতম সরকারিহস্তক্ষেপ, সর্বোচ্চ প্রশাসন’ – এই নীতির ওপর জোর দিয়ে ইতিমধ্যেই ১,২০০টি অপ্রচলিতআইন আমরা বাতিল বলে ঘোষণা করেছি গত তিন বছরে। দেউলিয়া এবংঋণ খেলাপি সম্পর্কিত নতুন নতুন আইন ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা এবং সেইসঙ্গে আইপিআরও মধ্যস্থতার বিষয়গুলি এক এক করে আমরা চালু করেছি। পরিবেশ সংক্রান্ত ছাড়পত্রআদায়ের বাধ্যবাধকতা থেকে আমরা মুক্ত করে দিয়েছি ৩৬টির মতো শ্বেত শিল্পকে। কোনসংস্থা বা কোম্পানির নথিভুক্তিকরণ এখন একদিনের ব্যাপার মাত্র। শিল্প লাইসেন্সেরমতো বিষয়টিকে আমরা সরল করে তুলেছি এবং পরিবেশ ও অরণ্য সংক্রান্ত ছাড়পত্র লাভেরজন্য চালু করেছি অনলাইন আবেদন ব্যবস্থা। এ সমস্ত কিছুই নতুন বাণিজ্যিক উদ্যোগ গড়েতোলার কাজকে খুবই সহজ করে তুলেছে। স্বাভাবিকভাবেই এর ফলাফলও আমরা লক্ষ্য করেছি। আমাদেরঅর্থনীতির অধিকাংশ ক্ষেত্রই এখন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য উন্মুক্ত।প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের৯০ শতাংশ ক্ষেত্রেই চালু হয়েছে স্বয়ংক্রিয় অনুমোদনদানেরব্যবস্থা। তাই, প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণের ক্ষেত্রে ভারত বর্তমানে রয়েছেপুরোভাগে। গত তিন বছরের তুলনায় এ বছর আমরা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ লাভ করেছি ৬৭শতাংশেরও বেশি। এই কারণে বর্তমানে আমরা বিশ্বে এক সুসংহত অর্থনীতি রূপে পরিচিতিলাভ করেছি। এর থেকেও বড় কথা হল, এই সমস্ত মাইলফলক আমরা স্থাপন করতে পেরেছি বেশকয়েকটি বড় ধরনের সাম্প্রতিক সংস্কার কর্মসূচিতে হাত দেওয়ার আগেই। এ বছর জুলাইমাসে সারা দেশে এক অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থা চালু করার মতো একটি দুরূহকাজ আমরা সম্পন্ন করতে পেরেছি। এর ফলে, ভারতে রাজ্য তথা কেন্দ্রীয় পর্যায়ে বহুবিধকর আরোপের ব্যবস্থা বিলুপ্ত করা হয়েছে। বন্ধুগণ,ভারতীয় জনসাধারণের এক বিশাল অংশ ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পরিধির বাইরে ছিল। মাত্র এক বছরের মধ্যেই খোলা হয়েছে ১৯ কোটি ৭০ লক্ষ ব্যাঙ্কঅ্যাকাউন্ট। এ বছর আগস্টমাস পর্যন্ত ভারতের ব্যাঙ্কগুলিতে খোলা হয়েছে ২৯ কোটি এই ধরনের অ্যাকাউন্ট। নগদছাড়াই খুব সহজে আর্থিক লেনদেনের জন্য প্রায় ২০ কোটি রুপে কার্ড এ পর্যন্ত বন্টনকরা হয়েছে। এইভাবে ব্যাঙ্কিং পরিষেবার সঙ্গে দরিদ্র সাধারণ মানুষকে যুক্ত করার ফলেতা সরকারি কাজকর্মে দুর্নীতির মোকাবিলার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনকরেছে। ১৪ কোটি ৬০ লক্ষেরও বেশিমানুষ এখন শুধুমাত্র রান্নার গ্যাসের ওপরই সরাসরি নগদ ভর্তুকির সুযোগ লাভ করছেনতাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে। এই ধরনের ৫৯টি পৃথক পৃথক কর্মসূচিরক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ সুফল হস্তান্তরের সুযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে সরকারিভাবে। যোগ্য ওসঠিক সুফল গ্রহীতাদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে এখন সরাসরি হস্তান্তরিত হচ্ছে ১০বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো ভর্তুকি সহায়তা। এই উদ্যোগের মধ্য দিয়েআন্তর্জাতিক মূল্য শৃঙ্খলে এক প্রধান ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার জন্য ভারতেররূপান্তরের লক্ষ্যে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। ভারতকে আমরা বিশ্বের এক বিশেষ উৎপাদনস্থলরূপে গড়ে তুলতে আগ্রহী। সেইসঙ্গে, আমাদের দেশের যুবশক্তিকে আমরা কর্মপ্রার্থী নয়,গড়ে তুলতে আগ্রহী কর্মদাতা রূপে। এই লক্ষ্যে ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ এবং ‘স্ট্যান্ডআপ ইন্ডিয়া’র মতো কর্মসূচিগুলির আমরা সূচনা করেছি। ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদেরশিল্পোৎসাহী করে তোলার ক্ষেত্রে একটি বড় বাধা ছিল আর্থিক ঋণ সহায়তার অপ্রতুলতা।তাই, ভারতে এই প্রথমবার ন্যূনতম শর্তে ঋণ সহায়তার প্রসার ঘটানো হয়েছে ৯ কোটিরওবেশি ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীর জন্য‘মুদ্রা’ যোজনার মাধ্যমে। এই সংখ্যা ফিলিপিন্স-এরমোট জনসংখ্যার প্রায় কাছাকাছি। এর ফলে, দেশের অর্থনীতিতে ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীদেরঅবদানকে স্বীকৃতিদানের পাশাপাশি, ব্যবসায়িক দিক থেকে কর্মদ্যোগীদের ক্ষমতায়নেরব্যবস্থা করা হয়েছে। আমি লক্ষ্য করছি যে ফিলিপিন্স এবং আসিয়ান অঞ্চলে শিল্পোদ্যোগপ্রচেষ্টার ওপর বিশেষভাবে গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। এই শীর্ষ বৈঠকে শিল্পোদ্যোগীদের প্রয়োজনেরস্বার্থেইআসিয়ানের পক্ষ থেকে পরামর্শ ও পথ প্রদর্শনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।নিঃসন্দেহে এ এক প্রশংসনীয় উদ্যোগ। সত্যি কথা বলতে কি, অদূর ভবিষ্যতে দক্ষিণ এবংদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া হয়ে উঠতে চলেছে আন্তর্জাতিক উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক বিশেষচালিকাশক্তি। তাই, আসিয়ানের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ রক্ষা করে চলা ভারতের এক বিশেষলক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। সতত চঞ্চল এই অঞ্চলটির জন্য আমরা স্থল, জল এবং আকাশপথে সংযোগ ওযোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আগ্রহী। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য দেশগুলিকে যুক্তকরার লক্ষ্যে মায়ানমার এবং থাইল্যান্ডের মধ্য দিয়ে এক ত্রিপাক্ষিক মহাসড়ক গড়েতোলার কাজ ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। ভারত থেকে বিশ্বেরঅন্যত্র পর্যটনের প্রসার ঘটেছে দ্রুততম গতিতে। এইভাবে সংযোগ ও যোগাযোগের বিষয়টিকেবিশেষ গুরুত্বদানের লক্ষ্যে আগামী মাসে নয়াদিল্লিতে ভারত আয়োজন করতে চলেছেআসিয়ান-ভারত সংযোগ ও যোগাযোগ সম্পর্কিত শীর্ষ বৈঠকের।সবক’টি আসিয়ানভুক্ত দেশেরমন্ত্রী, সরকারি কর্মী ও আধিকারিক এবং বাণিজ্যিক প্রতিনিধিরা তাতে অংশগ্রহণ করবেন।ভারত যেভাবে এই অঞ্চলে ব্যবসা-বাণিজ্যের সুযোগ-সুবিধা প্রসারের কথা চিন্তা করছে,তাতে আমি নিশ্চিত যে আসিয়ানের বাণিজ্য গোষ্ঠীগুলিও ভারতে বাণিজ্যিক উদ্যোগ গ্রহণেরসম্ভাবনাকে স্বীকার করে নিয়েছে। আপনাদের মধ্যে অনেকেই যখন ভারতের সঙ্গে ইতিমধ্যেইনিবিড়ভাবে যুক্ত হয়েছেন, অন্যরা তখন হয়তো চিন্তা করছেন যে এই সম্ভাবনাকে কিভাবেকাজে লাগানো যায়। আগামী বছরের জানুয়ারিতে আসিয়ান-ভারত স্মারক শীর্ষ বৈঠকের সঙ্গেসামঞ্জস্য রেখে আমরা আয়োজন করতে চলেছি আসিয়ান-ভারত বাণিজ্য ও বিনিয়োগ বৈঠক এবংপ্রদর্শনীরও। আপনাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতিতেঅংশগ্রহণের জন্য ভারত যেমন আগ্রহী, ঠিক তেমনই আমরা আসিয়ানভুক্ত আপনাদের সকলকেইআমন্ত্রণ জানাই আমাদের উন্নয়ন প্রচেষ্টার অংশীদার হয়ে ওঠার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কেরলের ভারকালায় শিবগিরি মঠ পরিদর্শন করেন। সেখানে তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মহান সমাজ সংস্কারক শ্রী নারায়ণ গুরুর উদ্দেশে। মঠ প্রাঙ্গণে এক সমাবেশে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রী নারায়ণ গুরুর আশীর্বাদ কামনা করার সুযোগ পেয়ে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছেন। তিনি বলেছেন, ‘ নাইসে ভয়াল হামলায়হতচকিত হয়ে পড়েছি। এই ধরনের জঘন্য হিংসাত্মক হামলার তীব্র নিন্দা করছি। নিহতদেরপরিবারবর্গের সঙ্গে আমিও সমব্যথী। আহতদের দ্রুত আরোগ্য ঘটবে বলে আশা করি। গুজরাটের ‘বাইকিং ক্যুইন্স’ নামে ৫০ জন মহিলা মোটরবাইক অভিযাত্রীদের একটি দল আজ নয়াদিল্লিতেএক সাক্ষাৎকারে মিলিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। গত ১৫ আগস্ট তাঁরা জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন লাদাখের খরডুংলায়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে অন্ধ্রপ্রদেশের তিরুপতি এবং ওড়িশার বেরহামপুরে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ সায়েন্স, এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চের (আইআইএসইআর) স্থায়ী ক্যাম্পাস স্থাপন ও চালু করার সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। এর জন্য মোট ৩,০৭৪.১২ কোটি টাকা ব্যয় হবে বলে মনে করা হচ্ছে।এর মধ্যে ২,৩৬৬.৪৮ কোটি টাকা এককালীন স্থায়ী ব্যয় এবং ৭০৭.৬৪ কোটি টাকা পৌনপৌনিক ব্যয় হবে। দুটি আইআইএসইআর-এর প্রত্যেকটির জন্য একজন করে রেজিস্ট্রারের পদ সৃষ্টির সিদ্ধান্তও অনুমোদিত হয়েছে। ফ্রান্সের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রী নিকোলাস সারকোজি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে শনিবারসাক্ষাৎ করলেন। তিনি বিমুদ্রাকরনের সাফল্যের জন্য এবং দেশের কয়েকটি রাজ্যেসাম্প্রতিক বিধানসভা নির্বাচনে তাঁর দলের সাফল্যের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রীও শ্রীসারকোজিকে তাঁর লেখা নবতম গ্রন্হের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানান। প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশের প্রয়াণে বুশ পরিবার ও মার্কিন জনগণকে আমার সমবেদনা জানাই। বিশ্ব ইতিহাসে সংকটজনক পরিস্থিতির মোকাবিলায় তাঁর নেতৃত্ব বিশেষভাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি জর্জ এইচ ডব্লিউ বুশ ভারতের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সম্পর্ককে সর্বদা গুরুত্ব দিয়েছেন। তাঁর অনুপস্থিতি সর্বদা অনুভূত হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নর্মদা উদগম স্থল, অর্থাৎ নর্মদা নদের উৎসস্থলে স্থাপিত মন্দিরে প্রার্থনা করেন। মধ্যপ্রদেশের অমরকন্টকে নমামি নর্মদে – নর্মদা সেবা যাত্রার সমাপ্তি উপলক্ষে এক বিপুল জনসমাবেশে তিনি ভাষণ দেন। এইউপলক্ষে ভাষণকালে স্বামী অবধেশানন্দজি প্রধানমন্ত্রীকে ‘বিকাশ অবতার’ হিসেবেঅভিহিত করেন এবং বলেন যে প্রধানমন্ত্রী জল সংরক্ষণের লক্ষ্যে প্রভূত জনসচেতনতারপ্রসার ঘটিয়েছেন। জনসমাবেশেভাষণ প্রসঙ্গে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শিবরাজ সিং চৌহান বলেন যেজনসাধারণের অংশগ্রহণের মাধ্যমে নর্মদাকে বিশ্বের অন্যতম পরিচ্ছন্ন নদী হিসেবে প্রতিষ্ঠাকরা হবে। তিনি বলেন, মধ্যপ্রদেশের নর্মদা তীরবর্তী ১৮টি নগরের সবক’টিতেই জলশোধনপ্রকল্প গড়ে তোলা হবে। এই আন্দোলন এখানেই শেষ হবে না বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেনযে এটিকে অন্যান্য নদীর ক্ষেত্রেও প্রসারিত করা হবে। প্রধানমন্ত্রীএই উপলক্ষে ‘নর্মদা প্রবাহ – মিশন কর্মপরিকল্পনা’ প্রকাশ করেন। জনসমাবেশে ভাষণদিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তিনি নর্মদা সেবা যাত্রার ভ্রমণার্থীদের প্রণামজানাচ্ছেন এবং এই প্রচেষ্টার সুফল যাতে দেশের দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম মানুষের কাছেপৌঁছয় সেই আশাই প্রকাশ করছেন। নর্মদানদ শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে জীবনদায়ী ভূমিকা পালন করে চলেছে বলে উল্লেখ করে তিনিবলেন, সাম্প্রতিককালে নর্মদাকে অত্যন্ত নির্মমভাবে শোষণ করা হচ্ছে আর তার ফলেই আজ নর্মদাসেবা যাত্রার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তিনি বলেন যে, আমরা যদি আমাদের নদীগুলিকেসুরক্ষা না দিই আর লালন-পালন না করি তাহলে মানুষই ক্ষতিগ্রস্ত হবে। নর্মদাসেবা যাত্রার জন্য প্রধানমন্ত্রী গুজরাট ও মহারাষ্টের কৃষকদের হয়ে মধ্যপ্রদেশসরকার ও তার জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান। স্বচ্ছভারত মিশনে রাজ্যের ভূমিকার জন্য মধ্যপ্রদেশ সরকারকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীবলেন, নর্মদা সেবা মিশন উপলক্ষে রাজ্য সরকারের পেশ করার দলিলটি ভবিষ্যৎমুখি এবংপ্রাকৃতিক সম্পদ রক্ষায় যথোপযুক্ত স্বপ্ন নিয়ে তৈরি। তিনিস্বামী অবধেশানন্দজিকেও ধন্যবাদ জানান। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, নিরাপত্তা, প্রতিরক্ষা, সংস্কৃতি এবং মানুষে মানুষে যোগাযোগ প্রভৃতি ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বাড়ানোর সম্পর্কেও উভয় নেতার মধ্যে আলোচনা হয়। ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশের অংশিদার হতে কাতারের আগ্রহের কথা সেদেশের আমীর পুনরায় ব্যক্ত করেন। আঞ্চলিক শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে কাতারের ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। শনিবারফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইম্যানুয়েল ম্যাকঁর সঙ্গে প্যারিসে এক বৈঠকে মিলিত হলেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বিগতবছরগুলিতে মানব সেবা এবং মানবিক মূল্যবোধগুলির ক্ষেত্রে ভারত-ফ্রান্স দ্বিপাক্ষিকসম্পর্কের সাফল্যের দিকগুলিও তুলে ধরেন শ্রী মোদী। এই সম্পর্ক উত্তরোত্তর প্রসারলাভ করবে বলে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাসের কথাও পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। প্যারিসজলবায়ু চুক্তিকে সমগ্র বিশ্বের এক মিলিত ঐতিহ্য বলে বর্ণনা করেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। তাঁর মতে, এই চুক্তি হল ভবিষ্যৎ মানব প্রজন্মের আশা-আকাঙ্ক্ষারূপায়ণে বর্তমান প্রজন্মের এক বিশেষ অবদান। প্রধানমন্ত্রীবলেন, মাতা বসুন্ধরাকে রক্ষা করা আমাদের সকলের এক সম্মিলিত দায়িত্ব। সন্ত্রাস ওউগ্রপন্থা দমনের সম্ভাব্য পন্থা-পদ্ধতি সম্পর্কেও দুই নেতা মতবিনিময় করেছেন বলেজানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ও বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যৌথভাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সে দেশে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেছেন। উভয় নেতা যে প্রকল্পগুলির সূচনা করেন তার মধ্যে রয়েছে – বাস ও লরি সরবরাহ, ৩৬টি সামাজিক চিকিৎসা পরীক্ষাকেন্দ্র, ১১টি জল পরিশোধন কেন্দ্র এবং সে দেশে জাতীয় জ্ঞান-ভিত্তিক ব্যবস্থার সম্প্রসারণ। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে এটি তাঁর ষষ্ঠ ভিডিও সম্মেলন। তিনি আরও বলেন, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্পর্কের নিবিড়তার ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী হাসিনার দূরদৃষ্টি বড় অনুপ্রেরণা যোগায়। আজ যে সমস্ত প্রকল্পের সূচনা হয়েছে সেগুলি কেবল পরিবহণ ব্যবস্থার বিকাশই ঘটাবে না, সেইসঙ্গে জ্ঞান-ভিত্তিক আদানপ্রদানেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় জ্ঞান-ভিত্তিক ব্যবস্থা ভারত ও বিশ্বের সঙ্গে বাংলাদেশের পণ্ডিতবর্গ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে যোগসূত্র গড়ে তুলবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই প্রকল্পগুলি সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে ভারত ও বাংলাদেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রধানমন্ত্রী মোদী বাংলাদেশের সার্বিক উন্নয়নে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার উচ্চাকাঙ্খী প্রকল্পগুলির প্রশংসা করে সেগুলির বাস্তবায়নে ভারতের সমর্থনের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেন। কাজাখস্তান সফরের প্রাক্কালে এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীবলেছেন : “সাংহাই সহযোগিতা সংগঠন (এসসিও)-এর শীর্ষ বৈঠক উপলক্ষে ৮ ও ৯ জুন এইদু’দিনের জন্য আমি কাজাখস্তানের আস্তানা সফর করব। গত বছর এসসিও’র তাসখন্দ বৈঠকের সময় পূর্ণ সদস্য পদের জন্য প্রক্রিয়াকরণেরকাজ আমরা শুরু করেছিলাম। নারীক্ষমতায়নের লক্ষ্যে তাঁর রাজ্য সর্বদাই প্রধানমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সমর্থন জানিয়েযাবে বলে ঘোষণা করেন তিনি। কর্মসূচিদুটির সূচনা ও ঘোষণা উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে ভাষণদানকালে শ্রী মোদী বলেনযে প্রযুক্তির কল্যাণে সমগ্র দেশের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে ঝনঝুনুর। ‘বেটিবাঁচাও বেটি পড়াও’ আন্দোলনকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ঝুনঝুনু জেলার সাফল্যেতিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এক্ষেত্রে লিঙ্গ বৈষম্যের কোনপ্রশ্নই উঠতে পারে না। ছেলেদের মতোমেয়েরাও যাতে গুণগত শিক্ষার সুযোগ থেকে বঞ্চিত না হয়, তা নিশ্চিত করার ওপর বিশেষজোর দেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত ও পর্তুগালের মধ্যেপুর্নব্যবহাযোগ্য শক্তি সম্পর্কে সমঝোতায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরপৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্বাক্ষরোত্তর অনুমোদন প্রদত্ত হল। নতুনদিল্লিতে চলতি বছরের ৬ জানুয়ারী এই সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। “ পি ভি সিন্ধু তুমি দারুণসাফল্য দেখিয়েছ। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “মন্ট্রিলপ্রটোকলে কিগালি চুক্তি এই সকালে এক ঐতিহাসিক অনুষ্ঠানে এসে পৌঁছেছে, যা আমাদেরগ্রহের ওপর এক দীর্ঘস্থায়ী প্রভাব ফেলবে| চুক্তিটি এই শতকের শেষেবিশ্বের তাপমাত্রা ০.৫ ডিগ্রি কমে আসবে এবং প্যারিসে যে লক্ষ্য স্থির করা হয়েছিলতা অর্জনে আমাদের সক্ষম করে তুলবে| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে কথা বলেছেন এবং তাঁকে তাঁর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুক্রবারই প্রধানমন্ত্রী লাহোরে পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করবেন। এদিন এক টুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী লেখেন, প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফের সঙ্গে কথা বলেছি এবং তাঁর জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছি। শুক্রবার দুপুরে লাহোরে প্রধানমন্ত্রী নওরাজ শরিফের সঙ্গে দেখা করার জন্য আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছি, আমি দিল্লিতে ফেরার পথে ওখানে অবতরন করব। আমিআনন্দিত যে, আজ আমরা ‘ভারত-ইজরায়েল শিল্পগবেষণা ও উন্নয়ন এবং প্রযুক্তি উদ্ভাবনা তহবিল (আই.ফোর এফ.) ’-এরঅধীনে একমাত্র যৌথ গবেষণা ও উন্নয়ন (আর. এন্ড ডি.) প্রকল্পের সূচনা করেছি| গতজুলাই মাসে আমি যখন ইজরায়েল সফরে গিয়েছিলাম, তখন এর ঘোষণা হয়েছিল| আগামী পাঁচ বছরধরে ব্যবহারের এই তহবিল মূলত বাণিজ্যিকভাবে পরিবর্তিত করা যেতে পারে এমন আধুনিকপ্রযুক্তিগত সমাধানে দু ’দেশের প্রতিভাকে একসঙ্গে সম্মিলিতকরার ক্ষেত্রে একটি প্রাথমিক সুযোগ| প্রচুরধারণা ও প্রযুক্তি রয়েছে যা ভারতে ব্যবহারযোগ্য অথবা বাণিজ্যিকভাবে আনা সম্ভব| এভাবেভারত এখন পর্যন্ত সর্ববৃহত বাণিজ্য ও অর্থনৈতিক সংস্কার করেছে| জি.এস.টি. এবংঅর্থনৈতিক প্রযুক্তি ও ডিজিট্যাল বিনিময়ের সূচনার মধ্য দিয়ে আমরা বাস্তবিকই একআধুনিক কর-ব্যবস্থার দিয়ে এগিয়ে গেছি, যা একইসঙ্গে স্বচ্ছ, স্থায়ী ও অনুমানযোগ্য| এক্ষেত্রে একটি উদাহরণ দিতে চাই: আমরা যদিশুধুমাত্র আমাদের অপচয়কে বাঁচাতে এবং আমাদের ফল, সবজি ও উদ্যানবিষয়ক ক্ষেত্রেমূল্যযুক্ত করতে সহযোগী হই, তাহলে পরিবেশগত ও অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে কতটুকু লাভ হবে,তা ভাবুন! একই বিষয় জলের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য| কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশনেরকাজকর্মের মধ্যে সংহতি ও সমন্বয়সাধনের কাজ এই নতুন বাড়িটিতে উন্নততর হয়ে উঠবে বলেতিনি আশা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, গণতান্ত্রিক এবং অংশীদারিত্বমূলক প্রশাসনিক কাঠামোর মূল শর্তই হল স্বচ্ছতা ওদায়বদ্ধতা। কেন্দ্রীয় তথ্য কমিশন এক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেথাকে। বিশ্বস্ত ও নির্ভরযোগ্য প্রশাসন ও পরিচালনের ক্ষেত্রে এই ধরনেরপ্রতিষ্ঠানগুলি এক অনুঘটকের দায়িত্ব পালন করে বলে মনে করেন তিনি। শ্রী মোদীবলেন, দেশের গণতন্ত্রের সর্বাপেক্ষা বলিষ্ঠ স্তম্ভটি হল ক্ষমতায়নের সুযোগ লাভ করানাগরিক সমাজ। গত চার বছরে বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসূচির মধ্য দিয়ে সাধারণ মানুষেরকাছে তথ্যের যোগান দেওয়া ছাড়াও, তাঁদের ক্ষমতায়নের দায়িত্বও পালন করেছে কেন্দ্রীয়সরকার। প্রসঙ্গত, আধুনিক তথ্য যোগানের পাঁচটি মূল ভিত্তি বা স্তম্ভের কথা ব্যাখ্যাকরেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীরমতে, প্রথম ভিত্তি বা স্তম্ভটি হল ‘সওয়াল’। এই প্রসঙ্গে নাগরিক-কেন্দ্রিক MyGov মঞ্চটির কথা উল্লেখ করেন তিনি। তৃতীয়স্তম্ভ হিসেবে সংযোগ বা ‘সংবাদ’-এর কথা উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন, সরকার ওদেশের নাগরিকদের মধ্যে যোগাযোগ রক্ষা করে এই স্তম্ভটি। ‘সক্রিয়তা’কে তিনি চিহ্নিতকরেন চতুর্থ ভিত্তি বা স্তম্ভ হিসেবে। প্রধানমন্ত্রীর মতে, জিএসটি রূপায়ণের সময়বিভিন্ন অভিযোগ ও পরামর্শগুলিকে সক্রিয়ভাবে খতিয়ে দেখার চেষ্টা করা হয়। ‘সূচনা’অর্থাৎ, তথ্যকে তিনি বর্ণনা করেন পঞ্চম ভিত্তি বা স্তম্ভ হিসেবে। প্রধানমন্ত্রীবলেন, সরকারের কাজই হল তার কাজ ও কর্মসূচি সম্পর্কে নাগরিকদের অবহিত রাখা। সর্বশেষতথ্য সন্নিবেশিত অনলাইন ড্যাশবোর্ডের মাধ্যমে তথ্য পৌঁছে দেওয়ার এক নতুন ব্যবস্থাচালু করেছে তাঁর সরকার। ‘সৌভাগ্য’ এবং ‘উজালা’র মতো দুটি কর্মসূচি রূপায়ণেরঅগ্রগতি সম্পর্কে এইভাবে তথ্য পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে। শ্রী মোদীবলেন, যে সমস্ত তথ্য সাধারণভাবে জানতে চাওয়া হয়, তা নিয়মিতভাবে সংশ্লিষ্ট দপ্তর ওমন্ত্রকগুলির ওয়েব পোর্টালে আপলোড করা হয়। নাগরিক পরিষেবার মানকে আরও উন্নত করেতুলতে ডিজিটাল প্রযুক্তির আশ্রয় গ্রহণ করা হচ্ছে। একইভাবে, বিভিন্ন প্রকল্পেরকাজকর্ম সম্পর্কে তাৎক্ষণিক তথ্য সংগ্রহের ব্যবস্থাও চালু হয়েছে। গত সপ্তাহে‘প্রগতি’র মঞ্চে একটি ড্রোন ক্যামেরার সাহায্যে কেদারনাথের পুনর্নিমাণ কর্মসূচিরঅগ্রগতি খতিয়ে দেখা হয় বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রগতি’র মঞ্চেঅনুষ্ঠিত বৈঠকগুলির সুবাদে ৯ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগের বিভিন্ন প্রকল্পরূপায়ণে যথেষ্ট গতি বৃদ্ধি হয়েছে। এরফলে, দুর্নীতি দমনের পাশাপাশি, সরকারি সংগ্রহ ব্যবস্থায় স্বচ্ছতাও নিশ্চিত করাসম্ভব হয়েছে। সরকারের সঙ্গে সাধারণ মানুষের যোগাযোগের ক্ষেত্রে কোন মানুষকে ব্যক্তিগতভাবেউপস্থিত থাকার জন্য এখন আর সময় নষ্ট করতে হয় না। পদ্ধতিগতব্যবস্থাগুলিতে স্বচ্ছতা প্রসারের ফলে সরকারি কাজকর্মে জনসাধারণ এখন আরও বেশি করেআস্থা রাখতে পারছেন বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদীবলেন, নাগরিকদের উচিৎ তাঁদের দায়িত্ব ও কর্তব্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকা। সঠিকভাবেকাজ করে যাওয়ার বিষয়টিকে গুরুত্বের সঙ্গে ব্যাখ্যা করতে পারে কেন্দ্রীয় তথ্যকমিশনও। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনের গ্র্যান্ড ফিনালেতে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে পড়ুয়াদের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। দেশের একাধিক প্রতিষ্ঠানে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে তিনি মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে পড়ুয়াদের কৃষি, অর্থ, অপুষ্টি ও শিক্ষার মতো বিষয়গুলি নিয়ে কথা হয়। শ্রী মোদী স্মার্ট ইন্ডিয়া হ্যাকাথনকে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে সর্ববৃহৎ উন্মক্ত উদ্ভাবন মডেল হিসেবে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভারতীয় অর্থনীতির দ্রুত গতিতে বিকাশ ঘটছে এবং উদ্ভাবন ক্ষেত্রে দেশ এখন এক নতুন মানদন্ড তৈরি করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত আজ বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম স্টার্ট-আপ দেশ হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী মার্ক এবং তাঁর সঙ্গে আসা বিশিষ্টজনেদের ভারতে হার্দিক স্বাগত। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, প্রধানমন্ত্রী মার্কের সঙ্গে তাঁর চারজন ক্যাবিনেট সহযোগী, হেগ এর মেয়র এবং দু’শোরও অধিক বাণিজ্য প্রতিনিধি ভারতে এসেছেন। নেদারল্যান্ড থেকে আসা এটি সর্বকালীন সর্ববৃহৎ ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদল। এ থেকে স্পষ্ট হয় যে দু’দেশের বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ সম্পর্ক কতটা সক্রিয় এবং সম্ভাবনাপূর্ণ। আমি আনন্দিত যে নেদারল্যান্ডের ব্যবসায়ী মহল ভারতে সৃষ্ট সুযোগগুলি সম্পর্কে উৎসাহী। আমিও তাঁদের আশ্বস্ত করেছি যে, ভারতে অর্থনৈতিক সংস্কারের প্রতি আমার এই দায়বদ্ধতা বজায় থাকবে! কৃষি এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্র ভারতের বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। এই বিষয়টি আমাদের খাদ্য সুরক্ষার সঙ্গে জড়িত।পাশাপাশি, আমাদের ভারতের কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার লক্ষ্যপূরণেও এই বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এসব ক্ষেত্রে নেদারল্যান্ড-এর সাফল্যে কথা আমরা জানি। গতবছর ‘ওয়ার্ল্ড ফুড ইন্ডিয়া’তে নেদারল্যান্ড ‘ফোকাস কান্ট্রি’ রূপে অংশগ্রহণ করেছে। আর আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে ২০১৯-এ এর পরবর্তী সংস্করণে নেদারল্যান্ডের অংশীদারিত্ব আরও বেশি হবে। আমি আনন্দিত যে বারামতিতে সব্জি বিষয়ক প্রথম ইন্দো-ডাচ সেন্টার ফর এক্সেলেন্স চালু হয়ে গেছে। এভাবে অন্যান্য কিছু কেন্দ্রেও আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। এভাবে নগরোন্নয়ণের ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতা বৃদ্ধি পেয়েছে। ভদোদরা এবং দিল্লিতে বর্জ্য জল ব্যবস্থাপনার প্রকল্পে আমরা যৌথভাবে কাজ করছি। আমাদের সরকারের বিদেশনীতিতে অগ্রাধিকার হল বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় সমাজের দিকে বিশেষ নজর দেওয়া। ২০১৭ সালে সেন্ট মার্টিনে প্রবল সামুদ্রিক ঝড়ের প্রকোপে বিপর্যস্ত ভারতীয়দের উদ্ধারে সহযোগিতার জন্যে আমি প্রধানমন্ত্রী রুট এবং নেদারল্যান্ড সরকারকে বিশেষভাবে অভিনন্দন জানাই। আমি আরেকবার আপনাকে এবং আপনার সঙ্গে আসা বিশিষ্ট প্রতিনিধিদের ভারতে হার্দিক স্বাগত জানাই। তিনি ঐদিন জলন্ধরে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম পর্বের উদ্বোধন করবেন। সারা দেশে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনের উৎসাহ বজায় রেখে নিজ চিন্তাভাবনার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে প্রধানমন্ত্রী দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে এটি হবে তার পঞ্চমবারের জন্য ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসে ভাষন। একইসঙ্গে সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষেত্রেও পূর্ণ স্বাধীনতা থাকবেবিভিন্ন বন্দর কর্তৃপক্ষের। আমি এই সফরে ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে মত বিনিময়েরবিষয়েও আগ্রহী|” প্রধানমন্ত্রী ওয়াশিংটন ডি.সি.-তে সফর করবেন ২৪ থেকে২৬ জুন| এনিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড জে.ট্রাম্প-এর আমন্ত্রণে আমি ওয়াশিংটন ডি.সি. নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার ভারত ও ইথিওপিয়ার মধ্যে “তথ্য, যোগাযোগ ও প্রচার মাধ্যমের ক্ষেত্রেসহযোগিতা” বিষয়ক চুক্তিতে অনুমোদন দিল| এই চুক্তি গণ-মাধ্যমেরবিভিন্ন বিষয় যেমন রেডিও, প্রিন্ট মিডিয়া, টিভি, সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যম ইত্যাদিক্ষেত্রে দুই দেশের মানুষের সামনে আরও সুযোগ প্রদান করবে এবং জন-দায়বদ্ধতা সৃষ্টিকরবে| 3. সদস্য রাষ্ট্রগুলির মধ্যে কাস্টমস সম্পর্কিত বিষয়ে সহযোগিতা প্রসারেরলক্ষ্যে এক কৌশলগত কাঠামোর খসড়া রবিবার দুদিনের ইরান সফরেগেলেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর এই সফর উপলক্ষে কয়েকটি ট্যুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন: “প্রেসিডেন্ট রৌহানির আমন্ত্রণে আজ এবং আগামীকাল আমি ইরান সফর করব। প্রেসিডেন্ট রৌহানি এবং ইরানের মাননীয় শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে আমার আলাপ-আলোচনা কৌশলগত অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে দুদেশের মধ্যে সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সুযোগ এনে দেবে বলে আমার বিশ্বাস। যোগাযোগ, বানিজ্য, বিনিয়োগ, জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতা, সাংস্কৃতিক প্রসার এবং দুদেশের নাগরিকদের মধ্যে গভীর সংযোগ গড়ে তোলার মতো বিষয়গুলি থাকবে আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায়। সফরকালে চাবাহার চুক্তি সম্পর্কে চুড়ান্ত সিদ্ধান্তে পোঁছনো যাবে বলে আমি আশাবাদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী এই সঙ্গেই অস্ট্রেলিয়ায় ভারতীয় বংশোদ্ভূত মনমিতআলিশার-এর সাম্প্রতিক নৃশংস হত্যার খবরে ভারতবাসীর উদ্বেগের কথাও তাঁকে জানান। অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী শ্রী টার্নবুল এই হত্যায় গভীর শোক প্রকাশ করেবলেন যে, বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নয়াদিল্লির বাসভবনে গত শনিবার অনুষ্ঠিত হল সোমনাথ ট্রাস্ট-এরঅছি পর্ষদের এক বৈঠক। অসুস্থতার কারণে ট্রাস্ট-এর চেয়ারম্যান শ্রী কেশুভাইপ্যাটেলের অনুপস্থিতিতে বৈঠকে নেতৃত্ব দেন শ্রী এল কে আদবানি। প্রধানমন্ত্রী শ্রীমোদী, শ্রী হর্ষবর্ধন নেওটিয়া, শ্রী পি কে লহোরি এবং জে ডি পার্মার অছি পর্ষদেরসদস্য হিসেবে এদিনের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। শ্রীঅমিতভাই শাহ্‌ নতুন অছি নিযুক্ত হওয়ায় তাঁকে স্বাগত জানান পর্ষদের অন্যান্যসদস্যরা। বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়ায় সোমনাথঅনুরাগীদের সংখ্যা বর্তমানে ২০ লক্ষেরও বেশি। এছাড়াও, এলাকার অধিকাংশ স্থানে সিসিটিভি বসানোরওপ্রস্তাব করেন তিনি। আজ সমগ্র দেশ রাখীবন্ধন উৎসব পালন করছে। এই পুণ্যলগ্নে সমস্ত দেশবাসীকে জানাই অনেক অনেক শুভেচ্ছা! রাখীবন্ধনের এই উৎসব বোন ও ভাইয়ের প্রেম ও বিশ্বাসের প্রতীক। বহু শতাব্দী ধরে এই উৎসব সামাজিক সৌহার্দ্যের এক বড় উদাহরণ। দেশের ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনা আছে, যখন দেখা গেছে একটি রক্ষাসূত্র কীভাবে দুটি রাজ্য, বা আলাদা আলাদা ধর্মের মানুষকে বিশ্বাসের বন্ধনে আবদ্ধ করেছে। আকাশে বাতাসে শোনা যাবে ‘হাথী ঘোড়া পাল-কি জয় কান্‌হাইয়া লাল-কি’ আর ‘গোবিন্দা – গোবিন্দা’ নামের জয়ধ্বনি। কৃষ্ণের রঙে নিজেকে রাঙিয়ে নিয়ে এই উল্লাসে মেতে ওঠার আনন্দই আলাদা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে, বিশেষত মহারাষ্ট্রে ‘দহী-হাণ্ডি’র আয়োজনও ছেলেমেয়েরা করতে শুরু করে দিয়েছে নিশ্চয়ই। সমস্ত দেশবাসীকে জানাই রাখীবন্ধন ও জন্মাষ্টমীর আন্তরিক অভিনন্দন! জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে কাজে লাগার মত জ্ঞানের বিশাল ভাণ্ডার রয়েছে সংস্কৃত ভাষা ও সাহিত্যে। এই কারণে সূক্ষ্মাতীত ভাব ও বিষয় যাই হোক না কেন, পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তার বর্ণনা করতে পারা সংস্কৃত ভাষার একটি বড় বৈশিষ্ট্য। আমরা কোনও কথাকে ওজনদার করতে হলে ইংরাজি কোটেশন ব্যবহার করি, কখনও কখনও শায়রী ইত্যাদিও বলে থাকি। কিন্তু যাঁরা সংস্কৃতের সুভাষিত শব্দগুলির সঙ্গে পরিচিত, তাঁরা জানেন, কত কম শব্দে বিষয়ের সঠিক ব্যাখ্যা সংস্কৃতের এই সুভাষিত শব্দগুলির মাধ্যমে হতে পারে। তাছাড়া এই ভাষা, শব্দ আমাদের মাটির সঙ্গে, আমাদের পরম্পরার সঙ্গে জড়িত থাকায় একে বোঝাও খুব সহজ। জীবনে ‘গুরু’র স্থান বোঝানোর জন্য বলা হয় — অর্থাৎ, কোনও গুরু তাঁর শিষ্যকে যদি এক অক্ষর জ্ঞানও প্রদান করেন, তাহলে সমগ্র বিশ্বে এমন কোনও বস্তু বা ধন নেই, যা দিয়ে শিষ্য গুরুর ঋণ চুকিয়ে দিতে পারে। তাঁর জন্মজয়ন্তীতেই পুরো দেশ জুড়ে ‘শিক্ষক দিবস’ পালিত হয়। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদের কৃষকভাইরা, যাঁরা উদয়াস্ত পরিশ্রম করেন, তাঁদের জন্য বর্ষা খুশির খবর নিয়ে আসে। এমন একটা প্রাকৃতিক অবস্থা তৈরি হয়েছে যে কোথাও কোথাও অন্য স্থানগুলির তুলনায় অতিরিক্ত বর্ষা হচ্ছে। ক’দিন আগেই আমরা দেখলাম, ভীষণ বন্যা কীভাবে কেরলের জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে তুলেছে। এইরকম কঠিন পরিস্থিতিতে সারা দেশ কেরলের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। যাঁরা এই বিপর্যয়ে নিজেদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, আমাদের গভীর সমবেদনা জানাই সেই সব পরিবারগুলিকে। যা ক্ষতি হয়ে গেছে, তা হয়তো কোনও দিনই পূরণ হবে না ঠিক, কিন্তু সেই সমস্ত শোকসন্তপ্ত পরিবারজনেদের আমি ভরসা যোগাতে চাই, ১২৫ কোটি দেশবাসী এই দুর্দিনে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আপনার পাশে রয়েছে। আমি প্রার্থনা করি, যাঁরা এই প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে আহত হয়েছেন, তাঁরা দ্রুত আরোগ্য লাভ করুন। আমার পুরো বিশ্বাস আছে যে অদম্য প্রাণশক্তি ও সাহসের উপর ভর করে কেরলের জনজীবন দ্রুত স্বাভাবিক হয়ে উঠবে। কচ্ছ থেকে কামরূপ আর কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী পর্যন্ত প্রত্যেকটি মানুষ নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করছেন, যাতে যে যে প্রান্তগুলিতে বিপর্যয় ভয়াবহ হয়ে উঠেছে, তা সে কেরল হোক বা ভারতের যে কোনও জেলা বা এলাকা, সেই সমস্ত স্থানের জনজীবন স্বাভাবিক ছন্দে ফেরে। সমস্ত বয়সের মানুষ এবং সমস্তরকম কাজের সঙ্গে যুক্ত মানুষ নিজেদের সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছেন। প্রত্যেকে ভাবছেন কেরলের মানুষের দুঃখ-কষ্ট কীভাবে ভাগাভাগি করে নেওয়া যায়, যাতে তা লাঘব হয়। আমরা সবাই জানি, সশস্ত্র সুরক্ষাবলের জওয়ানরা কেরলের এই বিপর্যয়ে উদ্ধারকার্যের নায়ক। তাঁরা বন্যাকবলিত মানুষদের বাঁচাবার জন্য সব রকম উপায় অবলম্বন করেছেন। এয়ার ফোর্স, নেভি বা আর্মি, বি-এস-এফ, সি-আই-এস-এফ, আর-এ-এফ — প্রত্যেকে উদ্ধার কার্যে ও ত্রাণ পৌঁছে দিতে ঝাঁপিয়ে পড়েছেন। আমি বিশেষভাবে উল্লেখ করতে চাই এন-ডি-আর-এফের জওয়ানদের কঠোর পরিশ্রমের কথা। এই বিপদের মোকাবিলায় তাঁরা যেভাবে কাজ করেছেন তা বিশেষ প্রশংসার দাবী রাখে। এন-ডি-আর-এফের ক্ষমতা, তাঁদের দায়বদ্ধতা, দ্রুত সিদ্ধান্ত নিয়ে পরিস্থিতিকে আয়ত্বে আনার ক্ষমতা সমস্ত দেশবাসীর মনে এক শ্রদ্ধার আসন তৈরি করেছে। গতকালই ছিল ‘ওনাম’ উৎসব। আমরা প্রার্থনা করি, ‘ওনাম’-এর শুভ পার্বণ দেশকে বিশেষত কেরলকে এই বিপর্যয় দ্রুত কাটিয়ে ওঠার শক্তি দিক আর কেরলের উন্নতির গতিবৃদ্ধি হোক। আমি আরও একবার সমস্ত দেশবাসীর পক্ষ থেকে কেরলের জনসাধারণকে এবং দেশের অন্যান্য বিপর্যস্ত জায়গাগুলির মানুষজনকে বলতে চাই — এই দুর্দিনে পুরো দেশ তাঁদের পাশে আছে। গাজিয়াবাদ থেকে কীর্তি, সোনিপত থেকে স্বাতি বৎস, কেরলের ভাই প্রবীণ, পশ্চিমবাংলা থেকে ডক্টর স্বপন ব্যানার্জী, বিহারের কাটিহার থেকে অখিলেশ পাণ্ডে — আরও অসংখ্য মানুষ ‘নরেন্দ্র মোদী মোবাইল অ্যাপ’-এ এবং ‘মাই গভ’-এ অটলজীর জীবনের বিভিন্ন দিকগুলি নিয়ে আমাকে বলতে অনুরোধ করেছেন। ১৬-ই আগষ্ট যে মুহূর্তে দেশের ও বিশ্বের মানুষ অটলজীর প্রয়াণের খবর পেয়েছেন, প্রত্যেকে গভীর শোক ব্যক্ত করেছেন। অটলজীর জন্য সকলের যে স্নেহ, শ্রদ্ধা ও শোকভাবনার বহিঃপ্রকাশ দেখা গেল, তা ওঁর বিশাল ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। বিগত কয়েক দিনে ওঁর আরও অনেক গুণের বিষয়ে আমরা জানতে পেরেছি। জনমানসে তিনি একজন যোগ্য সাংসদ, সংবেদনশীল লেখক, সুবক্তা ও জনপ্রিয় প্রধানমন্ত্রী। সুশাসন অর্থাৎ Good Governance-কে মূল ধারায় নিয়ে আসার জন্য এই দেশ অটলজীর প্রতি সবসময় কৃতজ্ঞ থাকবে। এই সংশোধন আমাদের দেশের রাজনীতিতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তন আনে। প্রথমটি হল রাজ্যগুলির মন্ত্রীমণ্ডলীকে বিধানসভার মোট আসনের পনের শতাংশ পর্যন্ত সীমিত করা। একমাত্র অটলজীই এমন দূরদর্শী ছিলেন যিনি পরিস্থিতির পরিবর্তন আনেন ও রাজনীতিতে সুস্থ ও সুষ্ঠু ব্যবস্থার প্রবর্তন করেন। অটলজী এক সত্যিকারের দেশভক্ত ছিলেন। ওঁর সময়েই বাজেট পেশ করার সময়কে বদলানো হয়। ২০০১-এ অটলজী বাজেট পেশ করার সময়কে বিকেল পাঁচটার বদলে বেলা এগারোটা করে দেন। আরও একটি ‘আজাদী’ আমরা অটলজীর কার্যকালে লাভ করি ‘ইণ্ডিয়ান ফ্ল্যাগ কোড’ তৈরির মাধ্যমে। এটি লাগু হয় ২০০২ থেকে, যার ফলে সার্বজনিক জায়গায় তিরঙ্গা উত্তোলন সম্ভব হয়। সাধারণ ভারতীয়রা জাতীয় পতাকা উত্তোলনের সুযোগ পায়। এই ভাবে উনি আমাদের প্রাণপ্রিয় তিরঙ্গাকে জনসাধারণের কাছে নিয়ে আসেন। আপনারা দেখেছেন কীভাবে অটলজী ভোট প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন এনে, জনপ্রতিনিধি নির্বাচনে সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে দেশের ভিত মজবুত করেছেন। আপনারা দেখছেন আজকাল কেন্দ্রে ও রাজ্যে একইসঙ্গে নির্বাচন করানোর বিষয়ে আলোচনা হচ্ছে। লোকে এর পক্ষে-বিপক্ষে নিজেদের মতামত রাখছেন, যা হিতকারী ও লোকতন্ত্রের পক্ষে শুভ সংকেত। আমি অবশ্যই উল্লেখ করব, সুস্থ লোকতন্ত্রের জন্য, উত্তম লোকতন্ত্রের জন্য হিতকারী পরম্পরাগুলির বিকাশ, নানা বিষয়ে খোলামনে আলোচনা প্রয়োজন। গণতন্ত্র মজবুত করার ক্রমাগত প্রয়াস করাই উপযুক্ত শ্রদ্ধাঞ্জলি হবে অটলজীর প্রতি। ওঁর সমৃদ্ধ ও উন্নত ভারতের স্বপ্নকে পূরণ করার সংকল্পকে আরও একবার স্মরণ করে, সকলের পক্ষ থেকে অটলজীকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি। কিছু দিন আগেই সংসদের বাদল অধিবেশন সমাপ্ত হয়। আপনারা জেনে প্রসন্ন হবেন লোকসভার productivity ১১৮ শতাংশ ও রাজ্যসভার ৭৪ শতাংশ ছিল। দলীয় স্বার্থ ত্যাগ করে সমস্ত সাংসদ বাদলঅধিবেশনকে সবথেকে বেশি কাজে লাগানোর চেষ্টা করেছেন, তারই পরিনাম হলো, লোকসভা ২১ টি ও রাজ্যসভা ১৪ টি বিল পাস করেছে। সংসদের এই বাদল অধিবেশন সামাজিক ন্যায় এবং যুবকল্যাণের ক্ষেত্রে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। এই অধিবেশনে যুব এবং অনগ্রসর শ্রেণির উন্নতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ বেশ কতগুলো বিল পাস করা হয়েছে। আপনারা সবাই জানেন, কয়েক দশক ধরে SC/ST কমিশনের মতো OBC কমিশন তৈরির দাবী করা হচ্ছিল। অনগ্রসর শ্রেণীর অধিকারকে সুনিশ্চিত করার জন্য, দেশ এই বার OBC কমিশন তৈরির সংকল্পকে পূর্ণকরেছেএবং এই প্রতিষ্ঠানকে একটি সাংবিধানিক অধিকার দিয়েছে। এই পদক্ষেপ সামাজিক ন্যায়ের উদ্দেশ্যকে সফলভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করবে। তপশিলী জাতি ও তপশিলী উপজাতিদের অধিকারকে সু্রক্ষিত করার জন্য সংশোধিত বিল পাস করার কাজও এই অধিবেশনে শুরু হয়েছে। এই আইন SC ও ST শ্রেণির মানুষদের স্বার্থকে আরও বেশি সুরক্ষিত করবে। একই সঙ্গে এটি তাদেরঅপরাধীদের অত্যাচার থেকে রক্ষা করবে এবং তাদের আস্থা বাড়াবে। দেশের নারীদের প্রতি কোনও সভ্যসমাজ কোনও প্রকার অন্যায় বরদাস্ত করতে পারে না। কিছু দিন আগে আপনারা হয়তো সংবাদপত্রে পড়েছেন, মধ্যপ্রদেশের মন্দসোরের একটি আদালত মাত্র দু’ মাসের শুনানির পর এক নাবালিকাকে ধর্ষণ করার অপরাধে দু’জন দোষীকে ফাঁসির সাজা শুনিয়েছেন। এরও আগে মধ্যপ্রদেশের কাটনীর এক আদালত মাত্র পাঁচ দিন শুনানির পর অপরাধীদের ফাঁসির শাস্তি দেন। রাজস্থানের একটি আদালতও এরকম দ্রুত রায় দিয়েছেন। এই আইন মহিলা এবং বালিকাদের প্রতি অপরাধের মামলাকে নিষ্পত্তি করতে গঠনমূলক ভূমিকা নেবে। সামাজিক পরিবর্তন ছাড়া আর্থিক প্রগতি অসম্পূর্ণ। যখন আমরা দেশের স্বার্থ রক্ষার জন্য এগিয়ে আসি, তখন দরিদ্র, পিছিয়ে পড়া, শোষিত ও বঞ্চিতদের জীবনে পরিবর্তন আনা সম্ভব। এবারের বাদল অধিবেশনে সবাই একসঙ্গে একটি আদর্শ স্থাপন করে দেখিয়েছি। আমি দেশের সমস্ত সাংসদকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানাচ্ছি। প্রতিদিন সকালে সবার আগে সংবাদপত্রে, টেলিভিশনে, খবরে, Social Media-তে নজর থাকে কোন ভারতীয় খেলোয়াড় পদক জিতেছেন। এশিয়ান গেমস এখনও চলছে। আমি দেশের জন্য যাঁরা পদক জিতেছেন, তাঁদের সবাইকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। যাঁদের প্রতিযোগিতা এখনও বাকি, ওঁদেরওঅনেক অনেক শুভকামনা জানাই। ভারতের খেলোয়াড়রা, বিশেষ করে Shooting আর Wrestling-এখুব ভালো প্রদর্শন করছেই, যে সব খেলাতে আগে আমরা ভালো ফল করতে পারিনি, সেসব খেলাতেও আমাদের খেলোয়াড়রা পদক নিয়ে আসছেন, যেরকম Wushu আর Rowing। এগুলো কেবলমাত্র পদক নয়, এটা ভারতীয় খেলা আর ভারতীয় প্রতিযোগীদের আকাশ ছোঁয়ার সাহস এবং তাঁদের স্বপ্নপূরণের প্রমাণস্বরূপ। এটাও একটা ভালো চিহ্ন যে, যে সব খেলোয়াড়রা পদক জিতেছেন, তাঁদের অনেকেই অখ্যাত গ্রাম ও মফঃস্বল থেকে উঠে এসেছেন এবং কঠিন পরিশ্রম করে এই সাফল্যঅর্জন করেছেন। ২৯-শেআগস্ট আমরা ‘জাতীয় ক্রীড়া দিবস’ পালন করব, এই উপলক্ষ্যে আমি সমস্ত ক্রীড়াপ্রেমীদের শুভেচ্ছা জানাই, একই সঙ্গে হকির জাদুকর মহান খেলোয়াড় শ্রীধ্যানচাঁদজী-কে আমার শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করছি । দেশের সমস্ত নাগরিকদের কাছে আমার আবেদন, আপনারা সবাই খেলাধূলা করুন এবং নিজের ফিটনেসের প্রতি নজর দিন, কারণ সুস্থ ভারতই সম্পন্ন ও সমৃদ্ধ ভারতের নির্মাণ করবে। যখন ইন্ডিয়া ফিট হবে তখনই ভারতের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের নির্মাণ হবে। আরেকবার, এশিয়ান গেমসে পদক বিজেতাদের অভিনন্দন জানাই, একইসঙ্গে বাকি খেলোয়াড়দেরও ভালো ফলাফলের শুভকামনা জানাই। সবাইকে ‘জাতীয় ক্রীড়া দিবস’-এর অনেক অনেক শুভকামনা । যদি কেউ আপনাকে বলে প্রায় হাজার বছর আগে ৬০ মিটারেরও বেশি দীর্ঘ একটি গ্রানাইট স্তম্ভ বানানো হয়েছিল এবং তার শীর্ষে প্রায় ৮০ টন ওজনের একটি গ্রানাইট শিলাখন্ড রাখা হয়েছিল, তাহলে কি আপনি বিশ্বাস করবেন? কিন্তু তামিলনাড়ুর তাঞ্জাভুর-এর বৃহদেশ্বর মন্দির সেই স্থান, যেখানে স্থাপত্যকলা এবং ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এই অবিস্মরণীয় মেলবন্ধন দেখা যায়। গুজরাতের পাটনে একাদশ শতাব্দীর ‘রানী কি বাও’ দেখে সকলেই আশ্চর্য হয়ে যান। ভারতভূমি বরাবরই ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের প্রয়োগশালা। ভারতে এমন অনেক ইঞ্জিনিয়ার জন্মেছেন যারা অকল্পনীয়কে কল্পনীয় করেছেন এবং Engineering জগতে অসাধারণ কৃতিত্ব দেখিয়ে উদাহরণ স্থাপন করেছেন। কাবেরী নদীর উপর ওঁর বানানো Krishnarajasagar বাঁধের মাধ্যমে আজও লক্ষ লক্ষ কৃষক ও সাধারণ মানুষ উপকৃত হচ্ছেন। দেশের ওই অংশে তিনি তো পূজনীয় বটেই দেশের বাকি অংশের সব মানুষও তাকে অত্যন্ত সম্মান ও শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তাঁরই স্মরণে 15–ই সেপ্টেম্বর Engineers’ Day হিসেবে পালিত হয়। তার পদাঙ্ক অনুসরণ করে আমাদের দেশের ইঞ্জিনিয়াররা প্রাচ্য দুনিয়ায় নিজেদের স্বতন্ত্র পরিচয় তৈরি করেছেন। Engineering জগতের অভাবনীয় কৃতিত্বের কথা বলতে গেলে 2001 সালে গুজরাটের কচ্ছের সেই ভয়ঙ্কর ভূমিকম্পের সময়কার একটা ঘটনা আমার মনে পড়ে। উনি আমাকে দেখে মজা করে বলছিলেন, দেখুন এই আমার বাড়ি। কিন্তু কোথাও আপনি ক্ষয়ক্ষতির কোনো চিহ্ন দেখতে পাবেন না। আজকাল Disaster Management খুব গুরুত্বপূর্ণ একটি বিষয়। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আমরা মিলিত হতে থাকব। মনের কথা বলতে থাকব এবং নিজেদের মন থেকে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজেও আমরা একসঙ্গে নিযুক্ত থাকব। এই ভাবনা নিয়ে আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। পণ্য ও পরিষেবা কর অর্থাৎ জিএসটি চালু হওয়ার পর বিভিন্ন আইনে যে সমস্তসংস্থান রয়েছে, তা র অনেকগুলিরই আর কোনও প্রসঙ্গিকতা থাকবে না। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও বেলারুশের মধ্যে দেওয়ানি ও বাণিজ্যিক বিষয়ে পারস্পরিক আইনি সহায়তা সংক্রান্ত একটি চুক্তি অনুমোদিত হয়েছে। এই চুক্তি কার্যকর হওয়ার পর দু’দেশের মধ্যে দেওয়ানি এবং বাণিজ্যিক বিরোধের ক্ষেত্রে পারস্পরিক আইনি সহায়তা প্রদানের ব্যবস্থা গড়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (২২শে সেপ্টেম্বর) ছত্তিশগড় সফর করেন। জঞ্জগির-চম্পার ঐতিহ্যবাহী তাঁত ও কৃষি সংক্রান্ত একটি প্রদর্শনী ঘুরে দেখলেন তিনি। একইসঙ্গে তিনি বিভিন্ন জাতীয় সড়ক প্রকল্প এবং পেন্দ্রা-অনুপ্পুর তৃতীয় রেললাইনটির শিলান্যাস করেন। শ্রী মোদী কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কল্যাণ প্রকল্পের কিছু বাছাই করা সুবিধাভোগীর হাতে শংসাপত্রও তুলে দেন। এই রাজ্যগুলির উন্নয়নের যে স্বপ্ন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী দেখেছিলেন তাকে ভিত্তি করেই এই রাজ্যগুলির দ্রুত প্রগতি হচ্ছে বলে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সকলের উন্নয়নে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং ২০২২ নাগাদ প্রত্যেকের মাথার ওপর ছাদ তৈরি করা সুনিশ্চিত করতে চায়। তিনি আরও বলেন, শৌচাগার নির্মাণের বিষয়টিকে সরকার একটি বিশেষ প্রকল্প হিসেবে হাতে নিয়েছিল। উত্তর প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী প্রয়াত হেমবতী নন্দন বহুগুনার স্মরণে একটি ডাকটিকিট প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বুধবার ২৫ এপ্রিল ডাকটিকিট প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেতা হিসাবে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে বিশ্বাসী ছিলেন শ্রী বহুগুনা। তিনি আরও বলেন, মহাত্মা গান্ধী, আচার্য বিনোবা ভাবে, আচার্য নরেন্দ্র দেব, রামমনোহর লোহিয়া এবং চন্দ্রশেখর আজাদের মতো ব্যক্তিত্বের আদর্শেও উদ্বুদ্ধ ছিলেন শ্রী বহুগুনা। একই সঙ্গে, শিক্ষা ক্ষেত্র এবং দেশের পার্বত্য অঞ্চলের উন্নয়নে শ্রী বহুগুনার অবদানের কথা প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন। ব্রিক্‌সবাণিজ্য পরিষদের এই বৈঠকে আপনাদের স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত । আমাদেরএই দেশগুলির মধ্যে বহুধাবিস্তৃত পূর্ণ অর্থনৈতিক সহযোগিতা এবং বাণিজ্যিকপ্রচেষ্টার গভীরতার প্রতিফলন ঘটেছে পরিষদের কাজকর্মে। সংবেদনশীলএবং সমষ্টিগত সমাধানের মধ্য দিয়ে অন্তর্ভুক্তিমূলক অর্থনীতি গড়ে তোলার লক্ষ্যেব্রিক্‌স কার্যসূচি গ্রহণে বিশেষ অবদান রয়েছে পরিষদের । সুতরাং, তিন বছর আগে ডারবানে প্রতিষ্ঠিত ব্রিক্‌স বাণিজ্য পরিষদ যেবর্তমানে এক বলিষ্ঠ ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে তা আমাদের পক্ষে নিঃসন্দেহে এক উৎসাহেরবিষয়। ব্রিক্‌সরাষ্ট্রগুলির মধ্যে দ্রুত ও ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বাণিজ্যিকপ্রচেষ্টায় যুক্ত সংস্থা ও সংগঠনগুলি হল আমাদের অন্যতম মূল চালিকাশক্তি। তাদেরঅংশীদারিত্ব আমাদের সমাজে মূল্যবান সম্পদ সৃষ্টি করে। শুধু তাই নয়, উৎপাদনশীলতাবৃদ্ধির পাশাপাশি আমাদের অর্থনৈতিক প্রচেষ্টায় কর্মসংস্থানেরও সুযোগ সৃষ্টি হয়প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং দক্ষতা বৃদ্ধির মধ্য দিয়ে। এইদৃষ্টিভঙ্গি ও চিন্তাভাবনার গুণগ্রাহী আমি। শাসনতথা পরিচালন ব্যবস্থা এবং বিশেষত ভারতে বাণিজ্যিক কাজকর্ম সহজ ও সরল করে তোলারক্ষেত্রে গত দু’বছরে বেশ কিছু সংস্কারমূলক পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি আমরা। এরফল কিন্তু সুস্পষ্ট যা আমরা অনুভব করে চলেছি। সাফল্যেরনিরিখে বিশ্বের প্রায় সবক’টি সূচকেই ক্রমশ ওপরের দিকে রয়েছি আমরা। বর্তমানবিশ্বে উদার অর্থনীতির অন্যতম একটি দেশ রূপে আমরা রূপান্তর ঘটিয়েছি ভারতের । উন্নয়নপ্রচেষ্টা হয়ে উঠেছে যথেষ্ট শক্তিশালী এবং তাকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজেসচেষ্ট রয়েছি। বাণিজ্যিককাজকর্ম সহজ করে তোলা, বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতাকে দূর করা, দক্ষতা উন্নয়নপ্রচেষ্টাকে অব্যাহত রাখা, উৎপাদিত পণ্যের যোগান-শৃঙ্খলা গড়ে তোলা এবং পরিকাঠামোউন্নয়নের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলির প্রতি ব্রিক্‌স বাণিজ্য পরিষদেরসংবেদনশীল হয়ে ওঠার ঘটনায় আমি আনন্দিত। ব্রিক্‌সসদস্য দেশগুলির মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারে বিশেষভাবে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এইপরিষদ। নিউডেভেলপমেন্ট ব্যাঙ্ক (এনডিবি) এখন পূর্ণ মাত্রায় কাজ করে চলেছে। আমাদের সাধারণপ্রচেষ্টাগুলির এক ইতিবাচক ফল হল এনডিবি-র এই সাফল্য। প্রথমপর্যায়ের প্রকল্পগুলির কাজ শুরু করে দেওয়ার জন্য এনডিবি এবং তার পরিচালনকর্তৃপক্ষকে জানাই অভিনন্দন। বিশুদ্ধজ্বালানি, সবুজ পরিবেশ এবং নিরন্তর পরিকাঠামোকে অগ্রাধিকার দেওয়ার কাজে সফল হয়েছেএনডিবি । এইসাফল্যকে আমরা স্বাগত জানাই। সম্ভাবনাময়অর্থনৈতিক প্রকল্পগুলির রূপায়ণে এনডিবি-র সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার লক্ষ্যে আমরাউৎসাহ যুগিয়ে যাব ব্রিক্‌স বাণিজ্য পরিষদকে। ভারতেরউদ্যোগ ও আতিথেয়তায় এবং সবক’টি সদস্য রাষ্ট্রের সহযোগিতায় দু’দিন আগে নয়াদিল্লিতেঅনুষ্ঠিত হল প্রথম ব্রিক্‌স বাণিজ্য মেলা। বাণিজ্যিককাজকর্ম সম্পর্কে সচেতনতার প্রসারে এবং বাণিজ্যিক বিনিময় কর্মসূচির রূপায়ণে এইধরনের উদ্যোগকে আমাদের উৎসাহ যুগিয়ে যেতে হবে। আরকিছুক্ষণের মধ্যেই ব্রিক্‌স বাণিজ্য পরিষদ এবং এনডিবি পরিচালন কর্তৃপক্ষের বক্তব্যশুনব আমরা। বিপুল সংখ্যায় সমাগত আমার প্রিয় ভাই ও বোনেরা, সকল মোকামাবাসীকে আমার প্রণাম। ভগবান পরশুরামের পবিত্র ভূমিতে আপনাদেরসবাইকে সাদর নমস্কার। আমি আজ মোকামায় আসতে পেরে ধন্য। গোটা দেশ দীপাবলির প্রস্তুতিতে ব্যস্ত। ছটপুজার প্রস্তুতিও চলছে। ভাই ও বোনেরা, একটু আগেই আমাদের গড়করি মহোদয় বলছিলেন, কেন্দ্রীয় সরকারকতগুলি সড়ক নির্মাণ প্রকল্প শুরু করেছে, তাঁর বর্ণনায় পথের তালিকা এত দীর্ঘ ছিল যেআমি দেখছিলাম যে, আপনারা কেউ কেউ অধৈর্য্য হয়ে উঠছিলেন। সারা দেশের পাশাপাশি এত কমসময়ের মধ্যে বিহারের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য কতগুলি প্রকল্প শুরু করা যেতে পারে, তাআমরা করে দেখিয়েছি। আমি নীতিশজি এবং তাঁর সম্পূর্ণ টিমকে হৃদয় থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই যে,কেন্দ্রীয় সরকারের সকল প্রকল্প বাস্তবায়নের ক্ষেত্রে তাঁরা সম্পূর্ণ সহযোগিতা ওসমর্থন করেছেন। আমি তাঁর এই প্রবলমনোবাঞ্ছাকে সম্মান করি, আর আশ্বস্ত করি যে, কেন্দ্রীয় সরকার বিহারের কোটি কোটিজনগণের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য আপনাদের সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এগিয়ে যাবেআর বিহারকে উন্নতির নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, এ ধরনের সুদৃ্শ্য একটি সেতু গোটা বিহারেরআকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠবে। এই সেতু বিহারের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী ডঃ কৃষ্ণজিৎ-এরকর্মভূমি বেগুসরাইয়ের সঙ্গে রাজধানী পাটনাকে সংযুক্ত করবে। ডঃ কৃষ্ণজি বেগুসরাইয়েতেল শোধনাগার, সার কারখানা এবং তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র এবং বরৌনী’তে ডেয়ারি স্থাপন করেঐ অঞ্চলকে বিহারের শিল্প রাজধানী গড়ে তুলেছিলেন, সেজন্য আমি তাঁকে সাদর প্রণামজানাই। তিনি আমাদের অন্ধ শ্রদ্ধা থেকে মুক্তিরপথ দেখিয়েছেন। ভাই ও বোনেরা, এই অঞ্চল ভগবান পরশুরামের তপস্যাভূমি। প্রাচীনকালের তিনমহাজনপদ – অঙ্গ, মগধ ও মিথিলার সঙ্গমভূমিতে অবস্থিত মা গঙ্গার এই পবিত্রসিমরিয়াতটে গৌরবময় ইতিহাস কেউ ভুলতে পারবেন না। এই মঞ্চে দাঁড়িয়ে আজ আমি এই পবিত্রসিমরিয়াতটকে প্রণাম জানানোর সৌভাগ্য পেয়েছি। এই মাটিতেই সামান্য দূরে প্রতি বছরবীর শিরোমণি বাবা চোহরমলের নামে মেলা বসে। অসংখ্য মানুষ এখানে প্রণাম করতে আসেন।আমি এই পবিত্র ভূমিকেও প্রণাম জানাই। এত দীর্ঘ সময় ধরে কষ্ট করে আমাকে আশীর্বাদ দেওয়ার জন্য আপনারা রোদেদাঁড়িয়ে আছেন, আপনাদের সবাইকে আমি প্রণাম জানাই। আপনাদের অভিনন্দন জানাই। আমারপ্রিয় বিহারবাসী, আপনারা এত কষ্ট করে রোদে দাঁড়িয়ে আছেন, আমি আপনাদের ভরসা দিচ্ছিযে, কেন্দ্রীয় সরকার এবং রাজ্য সরকার আপনাদের এই তপস্যাকে ব্যর্থ হতে দেবে না। আমাদের দেশে এমন মানুষও আছেন, যাঁরা দেশকে পিছিয়ে নিয়ে যেতে চান। কোথাওকোনও ভালো সড়ক নির্মাণের প্রসঙ্গ এলে আমি এমন নেতাদেরও দেখেছি, তাঁরা বলতে শুরুকরেন, খবরের কাগজে বিবৃতি দিয়ে বলেন, অমুক সড়কপথের প্রয়োজন কী ছিল, আমাদের গরিবমানুষদের তো আর গাড়ি নেই, তা হলে সড়কের কী প্রয়োজন? এ ধরনের বিকৃত মানসিকতারনেতারা দেশের কত ক্ষতি করেছেন, তা আমরা কল্পনাও করতে পারব না! আজ আমি যেখানেই যাই,সেখানকার সাংসদরা এসে বলেন যে, আমার এলাকার অনেক গ্রামে প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়কযোজনার কাজ বাকি রয়েছে, এবার আমাদের অগ্রাধিকার দিন। যেখানেই গ্রামের মানুষদেরসঙ্গে দেখা হয়, তারাও প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মাধ্যমে তাঁদের গ্রামে সড়কপৌঁছে দেওয়ার দাবি রাখেন। ভাই ও বোনেরা, গঙ্গা আমাদের প্রত্যেকের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে যুক্ত। মাগঙ্গা না থাকলে, আমাদের এই ভূপ্রকৃতির কেমন ভয়ঙ্কর চেহারা হ’ত, কে জানে! কিন্তুসেই গঙ্গাকে রক্ষার জন্য আমরা কখনও সচেষ্ট থাকিনি। আমাদের এই ক্রমবর্ধমান উদাসীনতাদূর করতে হবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমাদের গঙ্গাকে বাঁচিয়ে রাখতে হবে, এর জলকেনির্মল করে তুলতে হবে, তবেই গঙ্গা বাধাহীন প্রবহমান থাকবে। গঙ্গানদীতে যাতে দূষিত জল এবংরাসায়নিক কারখানাগুলি থেকে নিষ্কাষিত দূষিত পদার্থ এসে না মেশে, তা দেখার জন্যঅভিযান শুরু হয়েছে। আজ বিহারে এক সঙ্গে বেশ কিছু প্রকল্পেরও শিলান্যাস হচ্ছে, যাআগামীদিনে মা গঙ্গাকে আমরা যেরকম শ্রদ্ধার চোখে দেখি, সেই রূপে নিয়ত প্রবহমানরাখার ক্ষেত্রে সাহায্য করবে। কোনও সংরক্ষণ ছাড়াই দরিদ্র থেকে দরিদ্রতম ব্যক্তি শেষমুহূর্তে এসে এই রেলগাড়িতে বসে নিজের বাড়ি যেতে পারবেন। মহামানা এক্সপ্রেস বরোদা থেকে সুরাট হয়ে বেনারস আসা-যাওয়া করবে। যাঁরাসুরাট, বরোদা, অঙ্কলেশ্বর এমনকি মহারাষ্ট্রে থেকে জীবিকার্জন করে তাঁরা এই ট্রেনেরমাধ্যমে দীপাবলি এবং ছটপূজার সময় আরামে বাড়ি আসতে পারবেন। এই বিষয়টি মাথায় রেখেইতাড়াহুড়ো করে চারটি গুরুত্বপূর্ণ ট্রেনের মাধ্যমে আমরা মহানগরগুলির সঙ্গে বিহার ওউত্তর প্রদেশকে যুক্ত করার কাজ করেছি। ভাই ও বোনেরা, একটু আগেই নিতিনজি বলছিলেন যে, গড়করিজি দায়িত্ব নিয়ে দেশেরপরিকাঠামো উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছেন বলেই দেশ স্বাধীন হওয়ার পর বিহারের মাটিতেযতটা কাজ হয়নি গত তিন বছরে তার থেকে বেশি পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ হয়েছে। শুধু সড়কনির্মাণের জন্য … একটু আগেই নীতিনজি বলছিলেন যে , ইতিমধ্যেই প্রায় ৫৩ হাজার কোটিটাকার কাজ মঞ্জুর হয়েছে এবং অনেক ক্ষেত্রে সেসব প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে গেছে। এই যোগাযোগ ব্যবস্থা যাতে সকলদরিদ্র মানুষের হাতের নাগালে পৌঁছে দেওয়া যায় সেটা আমাদের দেখতে হবে। গড়করিজিরনেতৃত্বে জল পরিবহণ ব্যবস্থা উন্নয়নের অভিযানও শুরু হয়েছে। আমরা যদি একবার এই জলপরিবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করতে পারি, তাহলে দেখবেন অর্থনৈতিক দৃষ্টিকোণ থেকেনদীগুলির গুরুত্ব আরও বৃদ্ধি পাবে, তখন নদীগুলির প্রতি মানুষের শ্রদ্ধা ও সমীহঅনেক বাড়বে। এই পরিবর্তনের ফলে দেশের বাণিজ্য কেন্দ্রগুলির মধ্যে অনেক সুলভে পণ্যপরিবহণের সৌজন্যে বাজারদরও কমবে। গরিব মানুষ অনেক সুলভে তাঁর নিত্য প্রয়োজনীয়জিনিসপত্র কিনতে পারবেন। ইংরেজ আমলে জলপথের সুবন্দোবস্ত থাকায় আমাদের এই মোকামা’কেঅনেকে মিনি কলকাতা বলতেন। বিগত দিনে আমরা দেখেছি, যে যে গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ নেই, সেই সকল গ্রামেসরকার বিদ্যুৎ পৌঁছনোর অভিযান শুরু করেছে। এই প্রকল্প তাই বিগত তিন বছর ধরে কেন্দ্রীয় সরকারেরসকল প্রচেষ্টার প্রতীক স্বরূপ। ভাই ও বোনেরা, বর্তমান সরকারের বৈশিষ্ট্য হ’ল এই যে, তিন বছর পর আজ আমাদের সমালোচকরাওস্বীকার করতে বাধ্য হচ্ছেন যে কাজ হয়েছে। আগে সরকারের স্বভাব ছিল যে, নির্বাচনকেমাথায় রেখে প্রকল্পগুলি ঘোষিত হ’ত আর তারপর সরকার সেগুলি বাস্তবায়িত করতে ভুলেযেত। আর বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার কোনও প্রকল্পের কথা ভাবলে আগে তার রোডম্যাপ তৈরিকরে। আর সেই প্রকল্পকে আমাদের চোখের সামনে নির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে সম্পূর্ণ করারজন্য ঝাঁপিয়ে পড়ে। আপনারা নিশ্চয়ই লক্ষ্য করেছেন যে, ইতিমধ্যেই ৩ কোটিরও বেশিদরিদ্র থেকে দরিদ্রতর পরবারে কিভাবে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পৌঁছে গেছে। তাঁরা এখনগ্যাসের উনুনে রান্না করেন। পরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে আমার মনে একটাই মাপকাঠিরয়েছে। আজ দেশের ৫ কোটিরও বেশি পরিবার নতুন শৌচালয় নির্মাণ করেছে। আপনাদের আমি আশ্বস্ত করতেচাই যে, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার পূর্ব ভারতের উন্নয়নে সংকল্পবদ্ধ। আমরা যেউন্নয়নের মডেল নিয়ে এগিয়ে চলেছি, তার মাধ্যমে পূর্ব উত্তর প্রদেশ, বিহার,পশ্চিমবঙ্গ, ওডিশা, আসাম এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের রাজ্যগুলির উন্নয়নকে নতুন উচ্চতায়পৌঁছে দেব। আপনাদের এখানে আমরা সার কারখানা গড়ে ওঠার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি।আগামীদিনে আমাদের কৃষকরা এর দ্বারা লাভবান হবেন। আর এই উন্নয়নযাত্রার সঙ্গে আপনারা সবাই যুক্ত হবেন। এই প্রত্যাশা নিয়েইআপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি যে, আমার সঙ্গে সম্পূর্ণ শক্তি দিয়ে বলুন – ভারতমাতা কি জয়, “মনোহর পাররিকরএবং অন্যান্য সদস্যরা শপথ গ্রহণ করায় তাঁদের অভিনন্দন জানাই। এর ফলে, ঐ অঞ্চলে আরও বেশি আবাসিক ও বাণিজ্যিক কমপ্লেক্স গড়ে উঠবে। এর আগে রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল (এসডিআরএফ) থেকে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে ঐ রাজ্যকে দেওয়া হয়েছিল ৩৩০ কোটি টাকা। এছাড়াও, এই তহবিলের আওতায় ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের প্রথম কিস্তিবাবদ অন্ধ্রপ্রদেশকে দেওয়া হয়েছে ১৭৩ কোটি ২৫ লক্ষ টাকা। বাঁধ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা, সেচ সম্প্রসারণ কর্মসূচি, বিন্দু বিন্দু জলসিঞ্চন প্রকল্প সহ খরা মোকাবিলায় অন্ধ্রপ্রদেশে যে সমস্ত ব্যবস্থা গড়ে তোলা হয়েছে তার একটি বিবরণ বৈঠকে পেশ করেন শ্রী এন চন্দ্রবাবু নাইডু। অতিক্ষুদ্র সেচ প্রকল্পে রাজ্যের অগ্রগতির বিষয়টিও তিনি তুলে ধরেন তাঁর বক্তব্যে। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে রাজ্যের ২০ লক্ষ হেক্টর জমিতে অতিক্ষুদ্র সেচ প্রকল্প গড়ে তোলা হবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। আবাদ ভূমিতে জল ও কৃষিকর্ম সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহের লক্ষ্যে তাঁর রাজ্য কিভাবে প্রযুক্তি অবলম্বন করেছে তাও তিনি বিবৃত করেন এদিনের বৈঠকে। “ মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে শপথগ্রহণ করায় ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং-কেঅভিনন্দন। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি শ্রী মৈত্রিপালা সিরিসেনা আজ (১৭ অক্টোবর, ২০১৮) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। সংবাদমাধ্যমের একাংশে তাঁকে এবং শ্রীলঙ্কার প্রাক্তন প্রতিরক্ষা সচিবকে ভারতের হত্যার ছক রয়েছে বলে যে খবর প্রকাশিত হয়েছে, তা তিনি খারিজ করে দেন। তিনি বলেন, এই ধরণের খবর সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন এবং দু’দেশের মধ্যে মৈত্রীর সম্পর্ক বিঘ্নিত ও ভুল বোঝাবুঝির সৃষ্টি করাই এর উদ্দেশ্য। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি জানান, সে দেশের প্রধানমন্ত্রী ব্যক্তিগতভাবে জরুরি ভিত্তিতে এ ব্যাপারে পদক্ষেপ গ্রহণ করেছেন এবং শ্রীলঙ্কা সরকার জনসমক্ষে এই ধরণের তথ্য খারিজ করে দিয়েছে। এ ব্যাপারে শ্রীলঙ্কায় ভারতীয় হাইকমিশনারের সঙ্গেও তাঁর কথা হয়েছে বলে সিরিসেনা জানান। শ্রীলঙ্কার রাষ্ট্রপতি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে তিনি ব্যক্তিগত বন্ধুর মতোই শ্রীলঙ্কার প্রকৃত বন্ধু হিসেবে মনে করেন। ভারত ও শ্রীলঙ্কার মধ্যে পারস্পরিক সুবিধাজনক সম্পর্কের উল্লেখ করে তিনি বলেন, ভবিষ্যতে এই সম্পর্ক আরও জোরদার করতে প্রধানমন্ত্রী মোদীর সঙ্গে তিনি হাত মিলিয়ে কাজ করবেন। শ্রীলঙ্কা সরকার জরুরি ভিত্তিতে এই ধরণের পরিস্থিতি মোকাবিলার উদ্যোগ নেওয়ায় এবং জনসমক্ষে এই ধরণের ভুল প্রচারের বিষয়টি খারিজ করে দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর প্রশংসা করেন। নয়াদিল্লি, ১২ এপ্রিল, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী লোকসভার অধ্যক্ষা শ্রীমতী সুমিত্রা মহাজনকে তাঁর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “লোকসভার অধ্যক্ষ সুমিত্রা মহাজনকে তাঁর জন্মদিনে শুভেচ্ছা। আমি তাঁর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি”। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল নতুন দিল্লির তালকাটোরা স্টেডিয়ামে ভারতীয় ডাক বিভাগের ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্ট ব্যাঙ্ক আইপিপিবি-র সূচনা করবেন। কেন্দ্রীয় সরকারের আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকরণের উদ্দেশ্যগুলি দ্রুত অর্জনের লক্ষ্যে ডাক বিভাগের এই ব্যাঙ্কটিকে সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে সুলভে এক বিশ্বাসযোগ্য আর্থিক প্রতিষ্ঠানের রূপ দেওয়া হয়েছে। দ্রুত উন্নয়নশীল ভারতের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলগুলিতে পৌঁছে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে উদ্যোগ নিয়েছে, তাতে ডাক বিভাগের পেমেন্ট ব্যাঙ্ক আরও একটি মাইলফলক হয়ে উঠতে চলেছে। সারা দেশে ডাক বিভাগের ১ লক্ষ ৫৫ হাজার ডাকঘরের প্রত্যেকটিকেই এই ব্যাঙ্ক ব্যবস্থার সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হবে। ভারতীয় ডাক বিভাগের এই ব্যাঙ্কে সেভিংস ও কারেন্ট অ্যাকাউন্টের সুবিধার পাশাপাশি অর্থ হস্তান্তর, নগদ সুবিধা হস্তান্তর ও বিম পেমেন্ট সহ ব্যবসায়িক লেনদেন সংক্রান্ত পরিষেবা পাওয়া যাবে। “লোকসভারসাংসদ তথা প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী সুলতান আহমেদের মৃত্যুতে আমিশোকস্তব্ধ। সমঝোতাপত্রটি রূপায়িত হলে আবাসন ও মানব বাসস্থান ক্ষেত্রে দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা আরও মজবুত হবে। মুম্বাই-আমেদাবাদরুটে ভারতের প্রথম উচ্চগতির রেল প্রকল্পের আজ শিলান্যাস করলেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং জাপানের প্রধানমন্ত্রী মিঃ শিনজো আবে। শিলান্যাসঅনুষ্ঠানে শ্রী মোদী তাঁর বক্তব্যে ‘নতুন ভারত’ গঠনের পথে উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবংইচ্ছাশক্তির বিষয়টির ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। দেশবাসীকে এই উপলক্ষে অভিনন্দনজানিয়ে তিনি বলেন যে বুলেট ট্রেন প্রকল্পের হাত ধরে রেল পরিবহণের ক্ষেত্রেপ্রযুক্তি ও অগ্রগতির এক বিশেষ মেলবন্ধন ঘটবে। এর সুফলওযে অচিরেই মিলবে সেসম্পর্কেও তাঁর আশার কথা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। উচ্চগতির এই রেল প্রকল্প গড়েতোলার কাজে জাপানের আর্থিক ও প্রযুক্তিগত সহায়তার জন্য তিনি ধন্যবাদ জানান জাপানেরপ্রধানমন্ত্রীকে। মিঃ শিনজো আবে-র বিশেষ প্রশংসা করে তিনি বলেন যে এই প্রকল্পেরসূচনা হয়েছে খুব অল্প সময়ের মধ্যেই। শ্রী মোদীবলেন যে উচ্চগতির এই রেল প্রকল্প শুধুমাত্র মুম্বাই ও আমেদাবাদ শহর দুটিকেপরস্পরের আরও কাছে নিয়ে আসার কাজেই সফল হবে না, একইসঙ্গে শত শত কিলোমিটার দূরেঅবস্থিত দুটি শহরের অধিবাসীদের মধ্যেও এক নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলবে। তিনি বলেন,মুম্বাই আমেদাবাদ করিডরে এক নতুন অর্থনৈতিক ব্যবস্থা গড়ে উঠতে চলেছে এবং এর ফলেসমগ্র অঞ্চলই হয়ে উঠবে একটিমাত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল। প্রধানমন্ত্রীবলেন, প্রযুক্তি সফল হয়ে উঠতে পারে তখনই যখনই তার সুফলগুলি পৌঁছে দেওয়া যায় সাধারণমানুষের কাছে। ভবিষ্যতে হাইস্পিডকরিডরটি যে দ্রুত বিকাশ ও অগ্রগতির এক বিশেষ অঞ্চল হয়ে উঠতে চলেছে একথাও প্রসঙ্গতঘোষণা করেন তিনি। শ্রী মোদীবলেন, ভবিষ্যতের চাহিদার দিকে লক্ষ্য রেখেই সরকার পরিকাঠামো উন্নয়নের কাজ চালিয়েযাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব এই প্রকল্প রূপায়ণের কাজ সম্পূর্ণ করতে সংশ্লিষ্ট সকলেই যেএকযোগে কাজ করে যাবে এ বিষয়ে তাঁর আস্থা ও বিশ্বাসের কথা ব্যক্ত করেন তিনি। এর আগে, জাপানেরপ্রধানমন্ত্রী মিঃ শিনজো আবে বলেন, ভারত-জাপান অংশীদারিত্ব শুধুমাত্র কৌশলগতএকবিশেষ সম্পর্কমাত্র নয়, একইসঙ্গে তা আন্তর্জাতিকও। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মধ্যপ্রদেশের মান্দলায় এক জনসভায় রাষ্ট্রীয় গ্রামীণ স্বরাজ অভিযান-এর সূচনা করেছেন। তিনি আগামী পাঁচ বছরের জন্য আদিবাসীদের সার্বিক উন্নয়নে পরিকল্পনার এক রূপরেখা প্রকাশ করেছেন। মান্দলা জেলার মানেরি-তে ইন্ডিয়া অয়েল কর্পোরেশনের একটি এলপিজি বটলিং প্ল্যান্টের ভিত্তিপ্রস্তরও তিনি স্থাপন করেন। স্থানীয় সরকারের এক ডায়রেক্টরিও তিনি প্রকাশ করেন। যে সব গ্রামে ১০০ শতাংশ ধোঁয়ামুক্ত রান্নাঘরের লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হয়েছে, ‘মিশন ইন্দ্রধনুষ’-এর আওতায় যে সব গ্রামে ১০০ শতাংশ প্রতিষেধক টিকা দেওয়া হয়েছে এবং ‘সৌভাগ্য’ কর্মসূচির আওতায় যে সব গ্রামে ১০০ শতাংশ বৈদ্যুতিকীকরণ হয়েছে, সেই গ্রামের সরপঞ্চদের সম্বর্ধনা জানান প্রধানমন্ত্রী। মান্দলা থেকে সারা দেশের পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিনিধিদের উদ্দেশে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মহাত্মা গান্ধীর গ্রাম স্বরাজ এবং ‘গ্রামোদয় থেকে রাষ্ট্রোদয়’-এর উদাত্ত আহ্বান স্মরণ করেন। তিনি বলেন, জাতীয় পঞ্চায়েতি রাজ দিবসে মধ্যপ্রদেশে আসতে পেরে তিনি আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, মহাত্মা গান্ধী সর্বদাই গ্রামের গুরুত্বের কথা তুলে ধরতেন এবং গ্রাম স্বরাজের কথা বলতেন। তিনি সংশ্লিষ্ট সকলকে গ্রামের জন্য কাজ করে যাওয়ার প্রতিশ্রুতি পালনের কথা পুনরায় স্মরণ করান। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, গ্রামোন্নয়নের কথা বলার সময় বাজেট বরাদ্দ খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু, বিগত কয়েক বছরে আলোচনার অভিমুখটি পরিবর্তিত হয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তিনি সাধারণ মানুষকে তাঁদের সন্তানসন্ততিদের শিক্ষার ওপর নজর দেওয়ার আহ্বান জানান এবং বলেন যে শিশুর ভবিষ্যতের জন্য এটি অত্যন্ত প্রয়োজন। কৃষিক্ষেত্রে স্বনির্ভরতার লক্ষ্যে বিভিন্ন উদ্যোগের প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেন। পঞ্চায়েতের প্রতিনিধিদের প্রতি তিনি জল সংরক্ষণের প্রতি নজর দেওয়ার আহ্বান জানান এবং জলের প্রতিটি বিন্দু যাতে সংরক্ষিত হয়, তা নিশ্চিত করার কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের গ্রামগুলির রূপান্তর করা গেলে, তাই ভারতের রূপান্তর সুনিশ্চিত করবে। কাঠমান্ডু ছাড়াও, জনকপুর এবং মুক্তিনাথ যেতে আগ্রহী ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ঐ দুটি স্থানে প্রতি বছর ব্যাপক সমাবেশ ও সমাগম ঘটে বহু সংখ্যক তীর্থযাত্রীর। ভারত ও নেপালের জনসাধারণের মধ্যে যে এক সুপ্রাচীন ও বলিষ্ঠ সাংস্কৃতিক তথা ধর্মীয় সম্পর্ক রয়েছে, এই ঘটনা তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ বলে মনে করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। নেপালের রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ এবং বন্ধুস্থানীয় ব্যক্তিদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আগ্রহও প্রকাশ করেছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ ইন্ডিয়ান ইনফরমেশনসার্ভিস (আই আই এস) গ্রুপ-এ’র ক্যাডার পুনর্গঠন প্রস্তাবটি অনুমোদন করেছে। তিনি আরও বলেন, শত্রুপক্ষ হোক বা প্রাকৃতিক দুর্যোগ, যে কোনও পরিস্থিতিতেই প্রতিরক্ষা ও সুরক্ষা ক্ষেত্রে সেনারা সর্বাগ্রে থাকেন। পুলওয়ামায় সাম্প্রতিক জঙ্গিহানায় সিআরপিএফ – এর যে সমস্ত জওয়ান শহীদ হয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তাঁদের স্মরণ করেন এবং দেশের সুরক্ষায় যাঁরা আত্মবলিদান করেছেন, সেই সমস্ত শহীদদেরও শ্রদ্ধা জানান। তিনি বলেন, সারা বিশ্বে আজ নতুন ভারতের যে ভাবমূর্তি গড়ে উঠছে, তার পেছনে সশস্ত্র বাহিনীগুলির বড় অবদান রয়েছে। জাতীয় যুদ্ধ স্মারক জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ হওয়ায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। সেনাবাহিনীর জন্য দীর্ঘদিন ধরে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতালের যে দাবি ছিল, সে প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এ ধরণের তিনটি হাসপাতাল গড়ে তোলার কথা ঘোষণা করেন। সশস্ত্র বাহিনীগুলির প্রতি সরকারের প্রয়াসের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী সেনা দিবস, নৌ দিবস এবং বায়ুসেনা দিবস উদযাপন উপলক্ষে সেনাকর্মীদের বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের বিষয়ে যে অনুপ্রেরণা দেওয়া হয়ে থাকে, তার কথাও উল্লেখ করেন। সেনাকর্মীদের সাহসিকতার পুরস্কারের জন্য ২০১৭’র ১৫ই আগস্ট যে পোর্টালের সূচনা হয়েছে, শ্রী মোদী সেকথাও স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষা সংগ্রহের সমগ্র প্রক্রিয়াতেই পরিবর্তনের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। এক্ষেত্রে সরকার স্বচ্ছতা ও এবং সংগ্রহ ব্যবস্থার প্রতিটি স্তরে যথাযথ নজরদারির উদ্যোগ নিয়েছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের আওতায় যে উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে, তিনি সেকথাও উল্লেখ করেন। ভারতীয় নৌ-বাহিনী ২০১৬ সালে যে আন্তর্জাতিক ফ্লিট রিভিউ বা নৌ সম্মেলন আয়োজন করে, তাতে ৫০টি দেশের নৌ-বাহিনী অংশ নেয়। এছাড়াও, ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রতি বছর সম-মানসিকতা ভাবাপন্ন বন্ধু দেশগুলির বাহিনীর সঙ্গে গড়ে ১০টি করে যৌথ মহড়ায় অংশ নিয়ে থাকে। ভারত মহাসাগরে জলদস্যু আক্রমণের ঘটনা লক্ষ্যণীয় হারে হ্রাস পাওয়া প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চলে জলদেশে ভারতীয় সেনার উপস্থিতি বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব মজবুত হওয়ায় এ ধরণের ঘটনা কমে এসেছে। ভারতীয় সেনাবাহিনীর জন্য ১ লক্ষ ৮৬ হাজার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট সংগ্রহের যে দাবি ছিল, সেই দাবি তাঁর সরকার পূরণ করেছে এবং বিগত সাড়ে চার বছরে ২ লক্ষ ৩০ হাজারেরও বেশি এই ধরণের জ্যাকেট সংগ্রহ করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় সেনাবাহিনীকে সর্বাধুনিক যুদ্ধ বিমান, হেলিকপ্টার, ডুবো জাহাজ, যুদ্ধ জাহাজ এবং প্রয়োজনীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে সুসজ্জিত করে তুলছে। সেনাবাহিনীর স্বার্থ সংশ্লিষ্ট যে সমস্ত বিষয় দীর্ঘদিন ধরে পড়েছিল, জাতীয় স্বার্থে সেই বিষয়গুলিতে দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জাতীয় যুদ্ধ স্মারকের পাশাপাশি, জাতীয় পুলিশ স্মারকও গড়ে তোলা হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার মহান জাতীয়তাবাদী নেতা, যেমন – সর্দার প্যাটেল, বাবাসাহেব আম্বেদকর এবং নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর অসামান্য অবদানকে স্বীকৃতি দিয়েছে। শ্রী ত্রিদন্ডী শ্রীমন্নারায়ন রামানুজ চিন্না জীয়ার স্বামীজি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। স্বামীজি প্রধানমন্ত্রীকে আগামী ২০১৭ সালে রামানুজাচার্য স্বামীর এক হাজার তম জন্মবার্ষিকী উদযাপনের প্রস্তাবিত কর্মসূচী এবং ওই উপলক্ষে হায়দ্রাবাদে রামানুজাচার্য স্বামীর ২১৬ ফুট দীর্ঘ ধাতব মূর্তির স্হাপনের কর্মসূচীর সস্পর্কে অবহিত করেন। রামানুজাচার্য স্বামী ছিলেন আধ্যাত্মিক জগতের একমহান ব্যক্তিত্ব, যাঁর আর্বিভাব ঘটেছিল ১০১৭ খ্রীষ্টাব্দে। মহারাষ্ট্রের দশজন আদিবাসী পড়ুয়ার একটি দলের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সাক্ষাৎ করলেন। এই পড়ুয়ারা মহারাষ্ট্র সরকারের আদিবাসী বিকাশ বিভাগের উদ্যোগ ‘মিশন সৌর্য্য’ দলের সদস্য। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের অভিনন্দন জানান। শ্রী মোদী তাঁদের যে কোনও ক্রীড়া বেছে নিয়ে নিয়মিত অনুশীলন করতে বলেন। দলের সকলকে প্রধানমন্ত্রী সম্বর্ধনা জানান। কমনওয়েলথ গেমস্‌-এ মহিলাদের ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় স্বর্ণপদক জয়ী কেসঞ্জিতা চানু’কে অভিন্দিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “দ্বিতীয়বারের জন্য স্বর্ণপদক জিতে নিল ভারত! মহিলাদের ৫৩ কিলোগ্রাম ওজনেরভারোত্তোলন পর্যায়ে স্বর্ণপদক জয়ী কে সঞ্জিতা চানু’কে আমার অভিনন্দন। তাঁর এইঅসামান্য সাফল্যে সমগ্র জাতি আজ উল্লসিত” – এক বার্তায় বলেছেন প্রধানমন্ত্রী। ইউজিসি, এআইসিটিই, আইসিএসএসআর, আইজিএনসিএ, আইজিএনওইউ, জেএনইউ এবং এসজিটি বিশ্ববিদ্যালয় যৌথভাবে এই সম্মেলনের আয়োজন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তরপ্রদেশের আমেথির কওহর সফর করেন। তিনি সেখানে কালাশনিকভ অ্যাসল্ট রাইফেল উৎপাদনের জন্য ভারত-রাশিয়া রাইফেল্‌স প্রাইভেট লিমিটেড নামক যৌথ উদ্যোগ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। আমেথিতে শ্রী মোদী একাধিক প্রকল্পের শিলান্যাস ও জাতির উদ্দেশ্য উৎসর্গ করেন। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী, এই যৌথ উদ্যোগের জন্য রাষ্ট্রপতি পুতিনকে ধন্যবাদ দেন। তিনি বলেন, আমেথির এই কারখানা থেকে লক্ষ লক্ষ রাইফেল তৈরি হবে যা দেশের নিরাপত্তা বাহিনীগুলিকে আরও শক্তিশালী করবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই উদ্যোগ নানা কারণে দীর্ঘায়িত হয়েছে। তাছাড়া, দেশের সেনানীদের জন্য আধুনিক রাইফেলের উৎপাদনে বিলম্ব আসলে জওয়ানদের প্রতি অবিচারের সামিল। ২০০৯-এ জওয়ানদের জন্য বুলেট প্রুফ জ্যাকেটের প্রয়োজনীয়তার কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী জানান, ২০১৪ পর্যন্ত এ ধরণের জ্যাকেট সংগ্রহই করা হয়নি। বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার জওয়ানদের এই চাহিদা পূরণ করেছে। তিনি আরও বলেন, আগে বহু ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অস্ত্রশস্ত্র ও সাজসরঞ্জাম সংগ্রহেও এ ধরণের বিলম্ব হয়েছে। আমেথিতে অন্যান্য উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রকল্পগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে বিভিন্ন বাধা-বিপত্তি এসেছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমেথিতে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা, সৌভাগ্য যোজনা এবং শৌচাগার নির্মাণের ফলে সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মান বাড়ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি শুরু করার কথাও উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, এই কর্মসূচির ফলে আগামী এক দশকে কৃষকদের কাছে ৭ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা পৌঁছে যাবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সিন্ধ্রিতে এক অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় সরকার এবং ঝাড়খন্ড সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এই প্রকল্পগুলি হল- তিনি বলেন, রাজ্য সরকার এবং কেন্দ্রীয় সরকার একযোগে ঝাড়খন্ডের দ্রুত উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যেসব প্রকল্পের জন্য আজ ভিত্তিপ্রস্তর স্হাপন করা হয়েছে, তার জন্য মোট ব্যয় হবে ২৭ হাজার কোটি টাকা। তিনি বলেন, এইসব উন্নয়ন প্রকল্পগুলি ঝাড়খন্ডের যুবকদের জন্য বিভিন্ন ধরনের সুযোগ সৃষ্টি করবে। শ্রী মোদী বলেন, যখন তিনি প্রধানমন্ত্রী পদের দায়িত্ব গ্রহন করেছিলেন, তখন দেশের ১৮ হাজার গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ ছিল না। আমরা এইসব গ্রামে মানুষের জীবনকে আলোকোজ্জ্বল করে তুলতে কাজ করেছি এবং এইসব জায়গায় বিদ্যুতের সংযোগ নিয়ে গেছি। আমরা আরও এক পা এগিয়ে ভারতের প্রত্যেকটি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার উদ্যোগ গ্রহন করেছি। তিনি বলেন, যেসব সার কারখানাগুলি দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ হয়েছিল, সেগুলি পুনরুজ্জীবনের জন্য উদ্যোগ গ্রহন করা হয়েছে। পূর্ব ভারত এর ফলে সর্বাধিক উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ঝাড়খন্ডে এইমস স্হাপনের ফলে এই রাজ্যের স্বাস্হ্য পরিষেবা ক্ষেত্রে রূপান্তর আসবে। দরিদ্র মানুষরা উচ্চমানের স্বাস্হ্য পরিষেবা পাবেন। জাতীয়পঞ্চায়েতি রাজ দিবসে এক বার্তায় এ কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ঐবার্তায় তিনি আরও বলেছেন যে, “গ্রাম-ভারতের সাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণেরএকটি সফল মঞ্চই হল পঞ্চায়েত প্রতিষ্ঠান। ভারতের রূপান্তরেরলক্ষ্যে এই প্রতিষ্ঠানগুলি এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে।” প্রধানমন্ত্রী আধিকারিকদের আরও বলেন যে, সরকারের জনকল্যাণমুখী যে সমস্ত কর্মসূচি রয়েছে তা যাতে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে আপামর জনসাধারণের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়, সেদিকেও দৃষ্টি রাখতে হবে আধিকারিকদের। তরুণ আধিকারিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তরে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, আধিকারিকদের সর্বদাই অনুভব করতে হবে যে দেশের প্রতিটি নাগরিকই যেন তাঁদের পরিবারেরই একজন সদস্য। এই মনোভাব নিয়ে যদি আধিকারিকরা কাজ করতে পারেন, তা হলে তাঁদের কাজে শক্তি ও উৎসাহ উদ্দীপনার সঞ্চার হবে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। অসামরিক সেবায় নিযুক্ত আধিকারিকদের সংঘবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার পরামর্শ দেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, ‘সংস্কার থেকে রূপান্তর’, তাঁর এই মন্ত্র-কে ‘পরিবর্তনের লক্ষ্যে কর্মপদ্ধতির সংস্কার’ বলে মনে করা প্রয়োজন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের। তাঁরা যদি এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে কাজ করে যেতে পারেন, তাহলে পরিবর্তন তথা রূপান্তর ঘটতে বাধ্য। সরকারি কাজকর্মে সফল আধিকারিকদের পুরস্কার লাভের জন্য অভিনন্দিত করে শ্রী মোদী বলেন, তাঁদের এই সাফল্য অন্যান্য আধিকারিকদেরও উৎসাহ ও প্রেরণা যোগাবে। সাধারণ মানুষের স্বার্থে লক্ষ্যমাত্রা পূরণে সাহসিকতার সঙ্গে নতুন নতুন চিন্তাভাবনা নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য আধিকারিকদের আহ্বান জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শুধুমাত্র মুখ বুজে কাজ করে যাওয়াই নয়, নতুন নতুন চিন্তাভাবনা ও প্রস্তাবও তাঁরা সরকারের কাছে পেশ করেছেন। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আবার একবার আপনাদের সবার সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পেয়েছি। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, নৌসেনার ছয়জন মহিলা কম্যাণ্ডারের একটি দল গত কয়েক মাস ধরে সমুদ্রসফর করছিল। বিভিন্ন মহাসাগর এবং কয়েকটি সমুদ্রযাত্রা করে প্রায় ২২,০০০ নটিক্যাল দূরত্ব অতিক্রম করেছে। এটি সারা বিশ্বেই একটি নজীর বিহীন ঘটনা। গত বুধবার, এই কন্যাদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার, তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা শোনার সুযোগ পেয়েছিলাম। আমি আরেকবার এই কন্যাদের দুঃসাহসিক কাজের জন্য, নৌসেনার খ্যাতি বাড়ানোর জন্য, ভারতের সম্মান বৃদ্ধির জন্য এবং বিশেষ করে ভারতের কন্যারা কোনও অংশেই কম নয় — বিশ্বের দরবারে এই বার্তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য অনেক অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি। ‘সেন্স অফ অ্যাডভেঞ্চার’-এর কথা কে না জানে। প্রথার বাইরে গিয়ে কিছু অসাধারণ কাজ করে দেখানোর অদম্য ইচ্ছে — এই ভাবনার মানুষ হয়ত কম, কিন্তু যুগ যুগ ধরে কোটি কোটি মানুষকে তা অনুপ্রাণিত করে এসেছে। আপনি নিশ্চয়ই দেখেছেন, গত কয়েকদিনে মাউণ্ট এভারেস্ট-জয়ী মানুষদের সম্পর্কে নতুন নতুন তথ্য পাওয়া গেছে। ১৬-ই মে মহারাষ্ট্রের চন্দ্রপুরের একটি আশ্রম-বিদ্যালয়ের পাঁচজন আদিবাসী ছাত্র-ছাত্রী — মনীষা ধুরবে, প্রমেশ আলে, উমাকান্ত মঢবি, কবিদাস কাতমোড়ে এবং বিকাশ সোয়াম — এরা পৃথিবীর সর্বোচ্চ শৃঙ্গ জয় করেছে। ২০১৭ সালের অগাস্ট মাস থেকে ওয়ার্ধা, হায়দ্রাবাদ, দার্জিলিং এবং লে-লাদাখে এদের প্রশিক্ষণ শুরু হয়। ‘মিশন শৌর্য’-য় এদের নির্বাচন করা হয়েছিল। এবং নামের সার্থকতা রেখে এভারেস্ট জয় করে এরা দেশের নাম উজ্জ্বল করেছে। আমি চন্দ্রপুর স্কুলের এই ছোট ছোট ছাত্র-ছাত্রীদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। সম্প্রতি ষোলো বছরের শিবাঙ্গী পাঠক সবচেয়ে কনিষ্ঠ ভারতীয় মহিলা হিসেবে নেপালের দিক থেকে এভারেস্ট জয় করেছে। কন্যা শিবাঙ্গীকে অনেক অনেক অভিনন্দন! অজিত বাজাজ এবং তাঁর কন্যা দিয়া এভারেস্ট জয়ী প্রথম পিতা-পুত্রীর জুটি। ‘Fit India’-র প্রসঙ্গে আমি বলব আমার বিশ্বাস, আমরা যত খেলবো, ততই দেশ খেলবে। Social Media-তে লোকে তাঁদের Fitness Challenge–এর ভিডিও শেয়ার করছেন, সেখানে অন্যদের ট্যাগ করে তাদেরও চ্যালেঞ্জ করছেন। Fit India-র এই অভিযানে আজ সকলে অংশগ্রহণ করছেন। সিনেমা জগতের লোক হোক, ক্রীড়াজগতের মানুষজন হোক বা দেশের আমজনতা, সেনা জওয়ান হন বা স্কুল শিক্ষক, চতুর্দিক থেকে একটাই সম্মিলিত ধ্বনি শোনা যাচ্ছে— “আমরা fit তো India fit”। আমার কাছে আনন্দের বিষয় যে ভারতীয় ক্রিকেট দলের অধিনায়ক বিরাট কোহলি আমায় চ্যালেঞ্জ করেছেন এবং আমিও সেই চ্যালেঞ্জ স্বীকার করেছি। আমার বিশ্বাস, এটি খুবই ভালো প্রক্রিয়া এবং এই ধরনের চ্যালেঞ্জ আমাদের নিজেদের fit থাকতে ও অন্যদের fit রাখতে উৎসাহিত করে। আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘মন কি বাত’-এ একাধিক বার আপনারা আমার কাছ থেকে খেলার বিষয়ে, ক্রীড়াবিদ্‌দের বিষয়ে কিছু না কিছু শুনেছেন। আর যেমন উঁচু-নীচু খেলা, খো-খো — এইসব খেলাগুলি আজকাল যেন হারিয়ে গেছে। আমাদের দেশের বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্য কোথাও হয়ত এই খেলাগুলির মধ্যেও দেখা যায়। একই খেলা নানা জায়গায় বিভিন্ন নামে পরিচিত। এটি কড়ি বা তেঁতুল বিচি অথবা গুটি দিয়ে ৮ বাই ৮-এর স্কোয়্যার বোর্ড-এ খেলা হয়। এবং ঐটি প্রায় সব রাজ্যেই দেখতে পাওয়া যায়। বিভিন্ন রাজ্যের বাসিন্দারা একে অপরের ভাষা না জানলেও খেলার সময় তারা ঠিক দেখে — আরে! ঐটি তাদের অজানা নয়! আমাদের মধ্যে এমন কেউ আছেন যিনি ছোটবেলায় ডাঙ্গুলি খেলেননি! ঐটি তো গ্রাম-শহর নির্বিশেষে সব জায়গায় দেখা যায় এমন খেলা। ঐটিও কিন্তু দেশের নানা প্রান্তে বিভিন্ন নামে পরিচিত। কিছু খেলার অবশ্য মরশুম থাকে। যেমন ঘুড়ি ওড়ানোর জন্য একটি বিশেষ মরশুম থাকে। যখন সবাই মিলে ঘুড়ি ওড়াই, যখন আমরা খেলাধূলা করি, নিজেদের বৈশিষ্ট্যগুলি স্বতঃস্ফূর্তভাবে প্রকাশ করতে পারি। আপনারা দেখে থাকবেন অনেক বাচ্চা খুব লাজুক গোছের হয় কিন্তু খেলাধূলা করার সময় খুব চঞ্চল হয়ে ওঠে, নিজেকে প্রকাশ করে। বড়রা যারা স্বভাবত গম্ভীর থাকেন, খেলাধূলার সময় তাঁদের ভেতরে থাকা বাচ্চাটি বেড়িয়ে আসে। পারম্পরিক খেলাগুলি তৈরিই এমনভাবে যা শারীরিক ক্ষমতার পাশাপাশি আমাদের লজিক্যাল থিংকিং, একাগ্রতা, সজাগ থাকতে, স্ফূর্তি বাড়াতেও সাহায্য করে। আর এগুলি শুধু খেলা নয়, এগুলি আমাদের জীবনের মূল্যবোধ শেখায়, শেখায় লক্ষ্য স্থির করতে, দৃঢ়তা অর্জন করতে, টিম স্পিরিট তৈরি করতে, পরস্পরকে সাহায্য করতে। ছোট বাচ্চা থেকে শুরু করে দাদু-দিদা, সবাই মিলে একসঙ্গে খেলতে পারে আর তখন এই জেনারেশন গ্যাপ ছু-মন্তর হয়ে যায়। একই সঙ্গে আমরা আমাদের সংস্কৃতি ও পরম্পরা সম্পর্কেও ওয়াকিবহাল হই। কিছু খেলা আমাদের সমাজ, পরিবেশ ইত্যাদি বিষয়ে সচেতন করে। আপনাদের কাছে আমার অনুরোধ, এই ভাবনার গুরুত্ব বুঝে আমরা সবাই এটা সুনিশ্চিত করি যে আমরা পলিথিন, লো গ্রেড প্লাস্টিকের ব্যবহার করব না আর ‘প্লাস্টিক পলিউশান’-এর যে ক্ষতিকর প্রভাব আমাদের প্রকৃতি, বন্য জীবন ও আমাদের স্বাস্থ্যের উপর পড়ছে, তাকে কম করার চেষ্টা করব। World Environment Day-এর ওয়েবসাইট wedindia2018 থেকে সব তথ্য দেখে নিয়ে নিজের রোজকার জীবনে তার প্রয়োগের চেষ্টা করার জন্য আমি অনুরোধ করছি। যখন প্রচণ্ড গরম পরে বা বন্যা হয়, বৃষ্টি থামতেই চায় না, প্রচণ্ড ঠাণ্ডা পড়লে সবাই বিশেষজ্ঞর মতো ‘Global Warming’, ‘Climate Change’ -এসবের কথা বলতে থাকে। কিন্তু শুধু কথা বললেই হবে? প্রকৃতির প্রতি সংবেদনশীলতা, প্রকৃতিকে রক্ষা করা — এ আমাদের অভ্যাস এবং সংস্কার হওয়া উচিত। প্রাণহানি ঘটেছে, সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। এই সবই মূলতঃ Weather Pattern-এ যে পরিবর্তন হয়েছে, তার পরিনাম। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য প্রকৃতির বিরুদ্ধে যেতে আমাদের শিক্ষা দেয়নি। প্রকৃতির সঙ্গে সদ্ভাব বজায় রেখে মিলেমিশে থাকতে হবে। মহাত্মা গান্ধী তাঁর সারা জীবন ধরে এই কথাই বলে এসেছেন। ভারত আজ Climate Justice-এর কথা বলছে, COP 21 এবং Paris চুক্তিতে প্রধান ভূমিকা নিয়েছে, আমরাInternational Solar Alliance–এর মাধ্যমে সারা পৃথিবীকে একজোট করেছি, এই সবের পিছনে মহাত্মা গান্ধীর স্বপ্ন পূর্ণ করার এক শুভ চিন্তা কাজ করছে। এই ‘পরিবেশ দিবস’-এ আমরা একটু ভাবি, এই পৃথিবীকে আরও পরিষ্কার, আরও সবুজ বানানোর জন্য আমরা কী করতে পারি। সারা বিশ্বে এখন ২১-শে জুন ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ হিসেবে পালন করা হয় এবং এটা সর্বসম্মতভাবে স্বীকৃত যে কয়েক মাস আগে থেকেই এই অনুষ্ঠানের প্রস্তুতি পর্ব শুরু হয়ে যায়। শত শত বছর আগে বলা এই কথার অর্থ হল এই যে — নিয়মিত যোগাভ্যাস করার ফলে কিছু সদ্‌গুণ বন্ধু ও স্বজনের মতো হয়ে ওঠে। যোগাভ্যাসে সাহস বাড়ে যা সবসময় পিতার মত আমাদের রক্ষা করে। ভর্তুহরি বলেছিলেন, নিয়মিত যোগাভ্যাস করলে সত্য আমাদের সন্তান, দয়া আমাদের ভগ্নী, আত্মসংযম আমাদের ভ্রাতা, পৃথিবী আমাদের শয্যা আর জ্ঞান আমাদের ক্ষুধা নিবৃত্ত করার কাজ করে। যখন এত গুণের অধিকারী কেউ হন, তখন স্বাভাবিক ভাবেই এই যোগী সব ধরনের ভয়কে জয় করে। আরও একবার আমি সব দেশবাসীর কাছে আবেদন জানাচ্ছি যে, তাঁরা যেন ‘যোগ’-এর বিরাট ঐতিহ্যকে এগিয়ে নিয়ে যান এবং এক সুস্থ, সুখী এবং সদ্ভাবনাপূর্ণ রাষ্ট্র গড়ে তোলেন। আমি পণ্ডিতজীকে প্রণাম জানাচ্ছি। দেশের অনেক অংশে আমাদের জওয়ান ও কৃষকরা অন্যায়ের বিরুদ্ধে গর্জে উঠেছিল। দুঃখের কথা এই যে, আমরা অনেক দিন ধরে ১৮৫৭-র ঘটনাকে কেবলমাত্র বিদ্রোহ বা সিপাহী বিদ্রোহ বলে এসেছি। প্রকৃতপক্ষে এই ঘটনাকে শুধু ছোট করেই দেখান হয়নি, আমাদের আত্মসম্মানকে আঘাত করার এক চেষ্টা ছিল। এই বীর সাভারকর-ই নির্ভীক হয়ে লিখলেন যে ১৮৫৭ সালে যা কিছু হয়েছিল তা কোনওবিদ্রোহ নয় বরং স্বাধীনতার প্রথম লড়াই। সাভারকরের সঙ্গে লন্ডনের ইন্ডিয়া হাউজের বীরেরা এর পঞ্চাশতম জয়ন্তীসমারোহ সহকারে পালন করল। এটাও এক অদ্ভূত সংযোগ, যে মাসে স্বাধীনতার প্রথম স্বতন্ত্র সংগ্রাম শুরু হল, সেই মাসেই বীর সাভারকরের জন্ম হয়। সাভারকর-জীর ব্যক্তিত্ব নানা বিশেষত্বে পূর্ণ ছিল; শস্ত্র আর শাস্ত্র, দুটোরই উপাসক ছিলেন তিনি। মূলত বাহাদুরি আর ব্রিটিশ রাজের বিরুদ্ধে তাঁর সঙ্ঘর্ষের জন্য পরিচিত বীর সাভারকর। কিন্তু এসব ছাড়াও তিনি এক ওজস্বী কবি আর সমাজ সংস্কারকও ছিলেন যিনি সর্বদা সদ্‌ভাবনা আর একতার উপর জোর দিয়েছেন। সাভারকর-জীর ব্যাপারে এক অদ্ভূত বর্ণনা দিয়েছেন আমাদের প্রিয়, আদরণীয় অটল বিহারী বাজপেয়ী-জী। কতটা সঠিক ছবি তুলে ধরেছিলেন অটলজী। সাভারকর কবিতা আর বিপ্লব, দুটোকেই সঙ্গে নিয়ে চলেছেন। আমাদের এই কন্যারা, যারা কোনো এক সময় আবর্জনার স্তূপ ঘাঁটা থেকে শুরু করে বাড়ি-বাড়ি ভিক্ষা করতে বাধ্য হত – আজ তারা সেলাইয়ের কাজ শিখে গরীবদের আচ্ছাদন সেলাই করছে। এখানকারকন্যারা আজ নিজের এবং নিজের পরিবারের কাপড়চোপড় ছাড়াও সাধারণ থেকে উন্নত বস্ত্র সেলাই করছে। তারা এর সঙ্গে কৌশল বিকাশের কোর্সও করছে। আশা আর বিশ্বাসে ভরপুর আমাদের এই কন্যাদের আমি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের শুভকামনা জানাই। আপনার আশেপাশে, পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে খেয়াল করলে নজরে পড়বে যে কীভাবে লোকেরানানা সমস্যাকে পরাজিত করছে। আপনি অনুভব করেছেন যে যখনই আমরা কোনও চায়ের দোকানে যাই, সেখানকার চা খেয়ে তৃপ্তি পাই তখন কিছু মানুষের সঙ্গে আলোচনা আর বিচার-বিশ্লেষণও হয়। কিন্তু কিছু লোক এমন হন যাঁরা নিজেদের কাজের মাধ্যমে, নিজেদের পরিশ্রম আর উদ্যোগের মাধ্যমে পরিবর্তনের অভিমুখে এগিয়ে যান, সেটাকে বাস্তবে রূপ দেন। শ্রীমান ডি প্রকাশ রাও গত পাঁচ দশক ধরে শহরে চা বিক্রি করছেন। আপনারা জেনে আশ্চর্য হয়ে যাবেন, এক মামুলি চা-বিক্রেতা সত্তরেরও বেশি বাচ্চার জীবনে শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে। তিনি স্কুলে আসা সব বাচ্চার জন্য শিক্ষা, স্বাস্থ্য আর ভোজনের যাবতীয় আয়োজন করেন। ওঁর জীবন আমাদের সবার জন্য, সমাজ আর গোটা দেশের জন্য এক অনুপ্রেরণা। অনুপ্রেরণা দেওয়া এমন অনেকঘটনাবলী আপনারও আশেপাশে থাকবে। অসংখ্য ঘটনা হয়ত আছে। আসুন আমরা সদর্থক মানসিকতাকে এগিয়ে নিয়ে যাই। জুন মাসে এত গরম হয় যে লোক বর্ষার জন্য অপেক্ষা করে আর এই আশায় আকাশের মেঘের দিকে চাতকের মত চেয়ে থাকে। আজ থেকে কিছু সময় পরে লোক চাঁদেরও প্রতীক্ষা করবে। চাঁদ দেখতে পাওয়ার অর্থ হল ঈদ পালিত হওয়া।রমজানের সময় এক মাসের উপবাস শেষে ঈদের পর্ব জাঁকজমকপূর্ণ উৎসব শুরুর প্রতীক। আশা করছি যে ঈদের উৎসব আমাদের সমাজে সদ্ভাবের বন্ধনকে আরও মজবুত করবে। সামনের মাসে আবার একবার ‘মন কি বাত’এ মিলিত হব।ধন্যবাদ! প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জালিয়ানওয়ালা বাগ হত্যাকাণ্ডের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আজ আমরা যখন জালিয়ানওয়ালা বাগের ন্রৃশংস হত্যাকাণ্ডের শতবর্ষ উদযাপন করছি, সমগ্র দেশ সেই ভয়ঙ্কর দিনের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানাচ্ছে। তাঁদের সাহস এবং আত্মত্যাগ কোনদিন ভোলা যাবে না। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের পুণ্যতিথিতে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। জাতির প্রতি সর্দার প্যাটেলের বিশেষ অবদান এবং ঐক্য ও সংহতির লক্ষ্যে তাঁর বিশেষ বার্তার কথা স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ব্রিক্‌স শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের পাশাপাশি এই গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে মোদীর দ্বিপাক্ষিক বৈঠকেরও কর্মসূচি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সফরকালে প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, সংস্কৃতি, কৃষি ও ডেয়ারি ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তোলার মতো একাধিক বিষয়ে চুক্তি ও সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতের বৈদেশিক নীতিতে আফ্রিকা সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার পেয়ে এসেছে। সৌর জ্বালানি তথা সৌরশক্তির ব্যবহার যে ভারতে ক্রমশজনপ্রিয় হয়ে উঠছে, সে কথারও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদি এশিয়া কাপ জয়ের জন্য ভারতীয় মহিলা হকি দলকে অভিনন্দন জানালেন| কাবুলে জঙ্গি বিস্ফোরণের ঘটনার তীব্র নিন্দা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রানী লক্ষ্মীবাঈ জয়ন্তীতে তাঁর স্মৃতিতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “রানী লক্ষ্মীবাঈ প্রত্যেক ভারতীয়র কাছে অনুপ্রেরণা। সব প্রতিবন্ধকতা জয় করে ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে তাঁর লড়াই চিরস্মরণীয় হয়ে থাকবে। তাঁর মতো মহান ব্যক্তিদের লড়াইয়ের ফলে ভারত স্বাধীনতা অর্জন করেছে। ৫২ জন শিল্পী একসঙ্গে মঞ্চে এসে উপস্থাপিত করবেন এই বিশেষ আলেখ্যটি। এখানে উল্লেখযোগ্য বিষয়টি হল অটল বিহারী বাজপেয়ির জন্মদিনের প্রাক্কালেই পরিবেশিত হচ্ছে এই গীতি আলেখ্য। ‘অভিব্যাক্তি’ অনুষ্ঠানটিতে ভারতের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য-পরম্পরাকে উপস্থাপিত করবেন রাশিয়ান শিল্পীরা। ভারত ও রাশিয়ার জনসাধারণের মধ্যে যে মৈত্রী ও সৌভ্রাতৃত্বের সম্পর্ক রয়েছে তারই প্রতিফলন ঘটবে এই অনুষ্ঠান পরিবেশনের মধ্য দিয়ে। ‘অভিব্যাক্তি’ অনুষ্ঠানটি তাই পারস্পরিক শুভেচ্ছা, প্রীতি, আনন্দ ও উৎসাহের এক সাংস্কৃতিক প্রতিফলন। ইন্দো-টিবেটান বর্ডার পুলিশ (আইটিবিপি) বাহিনীর মহানির্দেশক শ্রী আর কে পচনন্দা, প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিলে সাড়ে ৮ কোটি টাকা দান করেছেন। নতুন দিল্লীতে আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে তিনি চেকটি প্রধানমন্ত্রীর হাতে তুলে দেন। কাস্টমস ক্ষেত্রে ভারত ও উরুগুয়ের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাবকেসমর্থন ও অনুমোদন জানাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আজ এখানে প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে এই দুটি দেশের মধ্যে এসম্পর্কিত একটি চুক্তি সম্পাদনের প্রস্তাবে সম্মতি দেওয়া হয়। তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রের অপারেশন্‌স কন্ট্রোল রুমটিও তিনি ঘুরে দেখেন। মানকাপুর ইন্ডোর স্পোর্টস কমপ্লেক্স পরিদর্শনকালে তিনি সেখানে নাগপুর আইআইআইটি, আইআইএম এবং এইম্‌স-এর শিলান্যাস উপলক্ষে ডিজিটাল ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। ডঃ বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকরের দীক্ষাভূমির ওপর একটি স্মারক ডাকটিকিটও প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘লাকি গ্রাহক যোজনা’ এবং ‘ডিজিধন ব্যাপার যোজনা’র বিজয়ীদের হাতে তিনি আজ পুরস্কার তুলে দেন। আঙুলের ছাপের সাহায্যে বায়োমেট্রিক পদ্ধতিতে নগদহীন লেনদেন ব্যবস্থার এক বিশেষ মঞ্চ ‘ভিম-আধার’-এর আজ সূচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। পরে আম্বেদকর জয়ন্তী উপলক্ষে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিশেষ দিনটিতে নাগপুরে উপস্থিত থাকতে পেরে তিনি বিশেষভাবে আনন্দিত। দীক্ষাভূমিতে প্রার্থনা জানানোর সুযোগ লাভ করে তিনি নিজেকে সম্মানিত বোধ করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডঃ আম্বেদকর ছিলেন এমনই এক ব্যক্তিত্ব যাঁর মধ্যে কোনরকম তিক্ততা বোধ বা প্রতিশোধ স্পৃহা কাজ করত না। বাবা সাহেব আম্বেদকরের এই গুণটি তাঁকে এক বিশিষ্টতা এনে দিয়েছিল। কোরাডি তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্র প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একবিংশ শতাব্দীতে জ্বালানি তথা শক্তিক্ষেত্রের গুরুত্ব অপরিসীম। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনে বিশেষভাবে সচেষ্ট রয়েছে তাঁর সরকার। স্বাধীনতার লক্ষ্যে ভারতবাসীর আত্মোৎসর্গের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জল, বিদ্যুৎ এবং অন্যান্য প্রাথমিক সুযোগ-সুবিধা সহ নিজস্ব বাসস্থানের অধিকার রয়েছে সকল নাগরিকেরই। শ্রী মোদী বলেন, ভিম অ্যাপটি জাতির জীবনে এক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে। বাবু জগজীবনরামের জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। একজন স্বাধীনতা সংগ্রামী তথা বর্ষীয়ান প্রশাসক হিসাবে ভারতেরপ্রতি তাঁর সেবার মানসিকতা ছিল অতুলনীয়। তিনি বলেন, তখন ভারতের নবজাগরণের যুগ। এই বিশ্ববিদ্যালয়টি তাই ভারতের এক মহান প্রজন্মের সাক্ষ্য বহন করে চলেছে। একইসঙ্গে ভারতে বর্তমানে সূচিত হয়েছে সুযোগ ও ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে আর এক বিপ্লবের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবকল্যাণ এবং অর্থনৈতিক বিকাশের যে লক্ষ্য আমরা স্থির করেছি তার দ্রুত বাস্তবায়নে বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের ওপর আমরা নির্ভরশীল। তাঁর কাছে বিজ্ঞান ছিল দুর্বল, বঞ্চিত এবং যুবসমাজের জীবনে রূপান্তরের লক্ষ্যে এক হাতিয়ার বিশেষ। তাঁর জীবনের লক্ষ্যই ছিল স্বনির্ভর এক ভারত গড়ে তোলা যার মধ্যে নিহিত থাকবে শক্তি ও দেশবাসীর প্রতি সহমর্মিতা। বর্তমান বিজ্ঞান কংগ্রেসের মূল বিষয়টি তাই ডঃ কালামের জীবনদর্শনের প্রতি এক শ্রদ্ধার্ঘ্য বিশেষ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অধ্যাপক রাও ও রাষ্ট্রপতি কালামের মতো মহান নেতা এবং আপনাদের মতো বিজ্ঞানীরাই বহু বছর ধরে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতকে এক অগ্রণী ভূমিকায় অবতীর্ণ করেছেন। ক্ষুদ্র অণু-পরমাণু থেকে বিশাল মহাকাশ পর্যন্ত বিধৃত আমাদের সাফল্য। দেশের ডিজিটাল নেটওয়ার্ক সরকারি পরিষেবার মান যেমন উন্নত করেছে, তেমনই দরিদ্র মানুষের স্বার্থে সামাজিক কল্যাণেও তা সফল হয়েছে। দেশের প্রথম জাতীয় মহাকাশ সম্মেলনে চিহ্নিত হয়েছে ১৭০টি বিষয় যা আমাদের শাসন ব্যবস্থা, উন্নয়ন এবং সংরক্ষণের ক্ষেত্রগুলির সঙ্গে গভীরভাবে সম্পৃক্ত। একইভাবে যুক্তরাষ্ট্রীয় সহযোগিতার নীতিতে অবিচল থেকে প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ককে আমরা এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করেছি। এইভাবেই কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির মধ্যে ঘনিষ্ঠতর সহযোগিতা সম্ভব হয়েছে বিজ্ঞানের বিভিন্ন ক্ষেত্রেও। বিজ্ঞানের জন্য সম্পদ আহরণের মাত্রাও আমরা ক্রমশ বাড়িয়ে তুলব এবং অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে তার প্রয়োগও সম্ভব করে তুলব। বৈজ্ঞানিক গবেষণা, বিজ্ঞানভিত্তিক প্রশাসন এবং বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণার মানের উন্নয়নেও আমরা সতত সচেষ্ট রয়েছি। শ্রী মোদি বলেন, ২০১৫-তে দুটি ঐতিহাসিক পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে বিশ্ব আঙ্গিনায়। গত সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসঙ্ঘে গৃহীত হয়েছে ২০৩০ সাল পর্যন্ত এক উন্নয়নমূলক কর্মসূচি। অন্যদিকে, গত নভেম্বরে প্যারিসে বিশ্ব নেতৃবৃন্দ সমবেত হয়েছিলেন এক ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরের অঙ্গীকার নিয়ে। জলবায়ু পরিবর্তন সমস্যার মোকাবিলায় এই সিদ্ধান্ত ছিল নিঃসন্দেহে গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রেও উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিকে জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার কাজে যুক্ত করতে পেরে আমরা সাফল্য অর্জন করেছি। শুধুমাত্র লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেই আমরা সন্তুষ্ট থাকতে পারি না। বিশুদ্ধ জ্বালানির ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতেও আমাদের প্রচেষ্টাকে অপ্রতিহত রাখতে হবে। আমরা গড়ে তুলতে চাই এমন এক বিশ্ব অংশীদারিত্ব যার মধ্যে সরকারের দায়বদ্ধতার সঙ্গে যুক্ত থাকবে বেসরকারি ক্ষেত্রের উদ্ভাবনী কার্যক্ষমতা। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে অতিরিক্ত ১৭৫ গিগাওয়াট পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যে এই উদ্ভাবনী শক্তির প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। কয়লার মতো জীবাশ্ম জ্বালানিকে আরও বিশুদ্ধ করে তোলার দায়িত্ব আমরা পালন করব। মহাসাগরের ঢেউ থেকে ভূ-তাপ নির্গত শক্তিকে ব্যবহার করে আমরা নতুন নতুন বিকল্প জ্বালানি শক্তি উদ্ভাবনে সচেষ্ট থাকব। প্যারিসে ভারত এক আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার সূচনা করে সৌরশক্তি সমৃদ্ধ দেশগুলির মধ্যে অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে। বিশুদ্ধ জ্বালানিকে জীবনের এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবেই নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার লক্ষ্যেও এক কার্যকর হাতিয়ার রূপে আমাদের গড়ে তুলতে হবে। একইসঙ্গে আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে জলবায়ুর পক্ষে সহনশীল কৃষি ব্যবস্থার বিকাশে। পৃথিবীর জল-হাওয়া, জীববৈচিত্র্য, হিমবাহ, সমুদ্র – সর্বত্রই জলবায়ুর প্রভাব সম্পর্কে আমাদের সতর্ক থাকতে হবে। এক নিরন্তর বিশ্বসংসার গড়ে তোলার কাজে তা একান্ত জরুরি। কারণ, মানব ইতিহাসে এই প্রথমবার আমরা প্রবেশ করেছি নগরায়নের এক শতকে। নগর পরিকল্পনার কাজে গড়ে তুলতে হবে উন্নততর বৈজ্ঞানিক পন্থা-পদ্ধতি। একইসঙ্গে, সংবেদনশীল থাকতে হবে ঐতিহ্য ও পরিবেশের প্রতিও। কঠিন বর্জ্যের ব্যবস্থাপনাও আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার আরেকটি দিক। আর এজন্য আমাদের প্রয়োজন বিজ্ঞান ও উদ্ভাবনী শক্তিকে। এই কারণেই সমুদ্র অর্থনীতি তথা ‘নীল অর্থনীতি’র দিকে আমরা আমাদের দৃষ্টি নিবদ্ধ করেছি। সমুদ্র বিজ্ঞানের উন্নয়নেও আমাদের বৈজ্ঞানিক প্রচেষ্টা থাকবে অব্যাহত। একইসঙ্গে যুক্ত হবে সামুদ্রিক প্রাণী সম্পর্কে গবেষণা ও জৈবপ্রযুক্তি উন্নয়নের কাজ। সমুদ্র বিজ্ঞান এবং ‘নীল অর্থনীতি’ সম্পর্কে চিন্তাভাবনার ফলশ্রুতিতে আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি বেশ কয়েকটি দেশের সঙ্গে। বাতাসে কার্বন নির্গমনের মাত্রা কমিয়ে এনে পরিবেশকে আরও নির্মল ও পরিচ্ছন্ন করে তুলতে হবে। তৃতীয় বিষয়টি হল জ্বালানি শক্তি। উন্নয়ন এবং দুর্বলতর মানুষের কল্যাণের বিষয়টিকে নিশ্চিত করে তুলতে হবে সমন্বয়সাধনের মনোভাব ও মানসিকতা নিয়ে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বছরটি বিজ্ঞান-ইতিহাসের ক্ষেত্রে এক উল্লেখযোগ্য ঘটনার শতবার্ষিকীর মুহূর্ত। আজ থেকে ১০০ বছর আগে বিজ্ঞানী অ্যালবার্ট আইনস্টাইন আপেক্ষিকতাবাদ সম্পর্কে তাঁর মতবাদ প্রকাশ করেছিলেন। তাই আজকের দিনটিতে তাঁর সেই মানবদরদী দর্শনের কথা আমাদের অবশ্যই স্মরণ করতে হবে। কারণ তিনি বলেছিলেন, প্রযুক্তিগত সমস্ত উদ্যোগের মূল কেন্দ্রবিন্দুতেই থাকা উচিত মানুষের জন্য চিন্তাভাবনা এবং তার জন্য ভবিষ্যতের পন্থা নির্ধারণ। ভারতীয়রেল সম্পর্কে বিভিন্ন অভিযোগ এবং তা নিরসনের ক্ষেত্রে অগ্রগতির বিষয়টি তিনিপর্যালোচনা করেন ‘প্রগতি’র মঞ্চে। রেল কর্মীদের দুর্নীতি সম্পর্কে প্রচুর অভিযোগজমা পড়ায় প্রকৃত দোষী ও অপরাধীদের বিরুদ্ধে কঠোরতম শাস্তি গ্রহণের নির্দেশ দেনপ্রধানমন্ত্রী। সমস্তরকম ক্ষোভ ও অনুসন্ধানের জন্য এক অভিন্ন টেলিফোন নম্বরেরব্যবস্থা করার জন্যও তিনি পরামর্শ দেন রেল কর্তৃপক্ষকে। শিশুদেরসার্বজনীন টিকাকরণ কর্মসূচি, ‘মিশন ইন্দ্রধনুষ’-এর অগ্রগতি পর্যালোচনাকালে দেশেরযে ১১টি জেলায় এই কর্মসূচির রূপায়ণ তুলনামূলকভাবে অনেক কম, সেগুলির দিকে বিশেষ নজরদেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, সুনির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যে এইকাজ সম্পূর্ণ করার লক্ষ্যে এবং কোন শিশুই যাতে টিকাকরণ কর্মসূচি থেকে বাদ না পড়েতা নিশ্চিত করতে এনসিসি ও নেহরু যুব কেন্দ্রের মতো যুব সংগঠনগুলিকেও এই কাজেরসঙ্গে যুক্ত করা প্রয়োজন। তিনি বলেন, এই সফল সফর দুই দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে পুনরায় শক্তি সঞ্চার করেছে। তিনি আফগানিস্তানে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং ক্ষমতা গঠনের জন্য ভারতের তরফে সহায়তার হাত বাড়িয়ে দেওয়ার বিষয়টিকে গভীরভাবে প্রশংসা করেন। দুই নেতা দ্বিপাক্ষিক এবং আঞ্চলিক- উভয় ক্ষেত্রে কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরোও গভীরতর করতে মতামত বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৬তম অধিবেশনে উদ্বোধনী ভাষণ দেন। অতীতের বিশিষ্ট ভারতীয় বিজ্ঞানী আচার্য জগদীশ চন্দ্র বোস, সিভি রমণ, মেঘনাদ সাহা, সত্যেন্দ্রনাথ বসু প্রমুখের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহান এই বিজ্ঞানীরা স্বল্প সম্পদ সত্ত্বেও কঠোর ও আন্তরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সেবা করেছেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শত শত ভারতীয় বিজ্ঞানীর জীবন ও কর্ম প্রযুক্তিগত উন্নয়ন ও জাতি গঠনের সঙ্গে যুক্ত গভীর মৌলিক দৃষ্টিভঙ্গীর এক অভিন্ন ইচ্ছাশক্তির পরিচয় বহন করে। আধুনিক বিজ্ঞান গবেষণা কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে ভারত তার বর্তমানকে পরিবর্তনের এবং নিজের ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। শ্রী মোদী প্রাক্তন দুই প্রধানমন্ত্রী শ্রী লালবাহাদুর শাস্ত্রী এবং শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর কথা স্মরণ করেন। এখন সময় এসেছে, ‘জয় অনুসন্ধান’ বলে আরেক কদম এগিয়ে যাওয়ার। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিজ্ঞানের প্রকৃত উদ্দেশ্য পূর্ণ হবে জ্ঞান সমৃদ্ধ প্রজন্ম গড়ে তোলা এবং আর্থ-সামাজিক স্বার্থে জ্ঞান ব্যবহারের মাধ্যমে। বিগত চার দশকের তুলনায় শেষ চার বছরে একাধিক প্রযুক্তি-ভিত্তিক বিজনেস ইনক্যুবেটর স্থাপন করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুলভ স্বাস্থ্য পরিচর্যা, আবাসন, দূষণমুক্ত বায়ু, জল ও শক্তি সহ কৃষি উৎপাদনশীলতা এবং খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের সঙ্গে যুক্ত সমস্যাগুলির সমাধানে বিজ্ঞানীদের আরও বেশি মনোনিবেশ করতে হবে। বিজ্ঞান সর্বজনীন হলেও স্থানীয় চাহিদা ও পারিপার্শ্বিক অবস্থার সঙ্গে যুক্ত সমস্যাগুলির সমাধানে প্রযুক্তিকে উপযুক্তভাবে সদ্ব্যবহার করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ‘বিগ ডেটা অ্যানালিসিস’, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, ব্লক চেন সংক্রান্ত প্রযুক্তিগুলিকে কৃষি ক্ষেত্রে, বিশেষ করে চাষিদের স্বার্থে কাজে লাগাতে হবে। ২০১৮-তে ভারতীয় বিজ্ঞান ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি সাফল্যের কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। ত্তিনি বলেন, শিল্প পণ্যগুলির মাধ্যমে গবেষণা ও উন্নয়নের সাফল্যগুলিকে একত্রিত করতে বাণিজ্যিকীকরণের এক মজবুত মাধ্যমের প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী সমাজ বিজ্ঞান, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তথা শিল্প ও মানবতাবাদকে মিশিয়ে এক অনন্য গবেষণামূলক প্রয়াস গ্রহণের আহ্বান জানান। মহাকাশ ক্ষেত্রে অগ্রগতির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী কার্টোস্যাট-২ এবং অন্যান্য উপগ্রহের উৎক্ষেপণে সাফল্যের কথা উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, গগণায়ন কর্মসূচির মাধ্যমে ২০২২ সাল নাগাদ তিনজন ভারতীয়কে মহাকাশে পাঠানোর প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। রক্তাল্পতাজনিত রোগের কার্যকর সমাধানে গবেষণার কাজ শুরু হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন বিষয়ক পরিষদ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উপযুক্ত নীতি প্রণয়নে সাহায্য করবে বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রীর গবেষণা ফেলোশিপ প্রকল্পের আওতায় দেশের সেরা প্রতিষ্ঠানগুলির এক হাজার প্রতিভাবান পড়ুয়াকে আইআইটি এবং আইআইএসসি প্রতিষ্ঠানে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের জন্য সরাসরি ভর্তির সুযোগ দেওয়া হবে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান। কয়েক ঘণ্টাপরই আমরা সবাই নববর্ষ ২০১৭কে স্বাগত জানাবো। ভারতের ১২৫ কোটি নাগরিক নতুন সংকল্প,নতুন আশা, নতুন উৎসাহ, নতুন স্বপ্ন নিয়ে নতুন বছরকে স্বাগত জানাবো । গত দীপাবলিরপরই আমাদের দেশ একটি ঐতিহাসিক শুদ্ধিযজ্ঞের সাক্ষী থেকেছে। ১২৫ কোটি দেশবাসীর ধৈর্‍্যআর সংকল্পশক্তি দিয়ে চলতে থাকা এই শুদ্ধিযজ্ঞআগামীঅনেকবছরধরেদেশকেলক্ষ্যপ্রদানেরক্ষেত্রেঅত্যন্তগুরুত্বপূর্ণভূমিকাপালনকরবে । ঈশ্বরপ্রদত্তমানবস্বভাবঅনেকভালগুণাবলীদিয়েগড়া । কিন্তুসময়েরসঙ্গেআসা বিকৃতি ও দোষের আবর্জনায় সে দমবন্ধঅনুভব করে। ভেতরের ভাল গুণাবলীর কারণে এই দোষের দমবন্ধ পরিবেশ থেকে বেরিয়ে আসারজন্যে সে ছটফট করতে থাকে। আমাদের বুদ্ধিজীবীরা একদিন অবশ্যই এ নিয়ে কথাবলবেন যে বহিঃশত্রুর আক্রমণ প্রতিহত করতে দেশবাসীর এই সঙ্ঘবদ্ধ সংকল্প স্বাভাবিকব্যাপার, কিন্তু যখন কোটিকোটিদেশবাসী নিজেদের স্বভাবে বাসা বেঁধে থাকা রোগগুলিরবিরুদ্ধে, অসাধুতা ও বিকৃতিগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্যে যুদ্ধক্ষেত্রে অবতীর্ণহন, তখন সেই ঘটনা প্রত্যেককে নতুনভাবে ভাবতে প্রেরণা জোগায়। কিন্তু গত ৮ নভেম্বরের পরবর্তী ঘটনাবলীআমাদের এগুলি পুনর্বিচার করতে বাধ্য করে। ১২৫ কোটি দেশবাসী অনেককষ্ট সহ্য করে প্রমাণ দিয়েছেন যে , প্রত্যেক ভারতবাসীর জীবনে সততা আর সদাচারের কত গুরুত্ব রয়েছে । দারিদ্র্যেরকবল থেকে বেরিয়ে আসার জন্যে ব্যাকুলতা, সমৃদ্ধ ভারত গড়ে তোলার জন্যে কী না করতেপারে! দেশবাসীযেকষ্টসহ্যকরেছেন , তা ভারতের উজ্জ্বলভবিষ্যত গড়ে তোলার জন্যে দেশবাসীর ত্যাগের দৃষ্টান্ত হয়ে থাকবে। ১২৫ কোটি দেশবাসীসংকল্পবদ্ধ হয়ে , নিজেদের পৌরুষও পরিশ্রম দিয়ে , উজ্জ্বল ভবিষ্যতগড়ে তোলার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। সাধারণতঃ দেশের নানা আন্দোলনে সরকার আরদেশের সাধারণ মানুষ পরস্পরবিরোধী থাকে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে সত্য আর সদাচারপুনঃপ্রতিষ্ঠার এই লড়াইয়ে উভয়ে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে এক ঐতিহাসিক লড়াইয়ে সামিল হয়েছে। সবাই নিজের মতামত জানিয়েছেন, সংকল্পেরকথা লিখেছেন, পাশাপাশি নিজেদের কষ্টের কথাও লিখেছেন। কিন্তু এই সকল চিঠি পড়ে আমিঅনুভব করেছি, আপ্নারা আমাকে কত আপন ভাবেন! আপনারা দুর্নীতি, কালো টাকা , নকল নোটের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে এ কপা – ও পিছিয়ে আসতে চান না ! আপাদের এই ভালবাসা আমার কাছে আশীর্বাদস্বরূপ । এখন আমরা চাইছি , নতুন বছরে যত দ্রুত সম্ভব ব্যাঙ্কগুলিতেসাধারণ অবস্থা ফিরিয়ে আনতে ! সরকারের পক্ষ থেকে সংশ্লিষ্ট সকলকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে যাতেদ্রুত ব্যাঙ্কগুলিতে সাধারণ অবস্থা ফিরিয়ে আনা হয় । এই ব্যাপারে সকল অর্থনীতিবিদের একটাই রায়, ক্যাশ অর্থ ব্যবস্থার বাইরে থাকলে অনেক বিপত্তির সম্মুখীন হতে হয় , তেমন ই ক্যাশ বা নগদ অর্থ ব্যবস্থার মুখ্যধারার মধ্যে থাকলে উন্নয়নের কাজকে ত্বরান্বিত করে। সম্প্রতি এত ভালভাল উদাহরণ পাওয়া গেছে যে সেগুলির বর্ণনা করতে গেলে কয়েক সপ্তাহ লেগে যাবে। আমরা কতদিনসত্য থেকে মুখ ফিরিয়ে থাকবো! একথা কি দেশের মানুষবিশ্বাস করবেন? আপনারা সবাই চারপাশে বড় বড় দালানবাড়ি, বড় বড় গাড়ি দেখেন। দেশের বড়শহরগুলির দিকে তাকালে একটি শহরেই বার্ষিক ১ লক্ষ টাকার বেশি রোজগার সম্পন্ন লক্ষলক্ষ মানুষ দেখতে পাই। তার মানে বুঝতে পারছেন, দেশের কল্যাণে দুর্নীতিবিরোধী আন্দোলনকেআরও শক্তিশালী করার প্রয়োজন রয়েছে! দুর্নীতি আরকালোটাকার বিরুদ্ধে বর্তমান লড়াইয়ে সাফল্য থেকে এখন সারা দেশে আলোচনার বিষয় হয়েউঠেছে, এখন বেইমানদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে? ভাই ও বোনেরা, আইন আইনেরপথে চলবে। এটাই অপ্রিয়সত্য যে মানুষ কিছু সরকারি আধিকারিকের স্বজনপোষণ আর দুর্নীতির শিকার। আমরা সচেতন থাকলে ভবিষ্যতে যাতে আমাদের কোন সন্তানআর হিংসা আর অত্যাচারের পথে না যায় সেটা সুনিশ্চিত করতে পারব! গত ৫০ দিনধরে ব্যাঙ্ক কর্মচারীরা দিন রাত এক করে কাজ করেছেন। তাদেরকে ক্ষমা করা হবে না! ব্যাঙ্কিংব্যবস্থার জন্যে আজ সোনালি সুযোগ, ঐতিহাসিক উপলক্ষ! ভারত এবছর পণ্ডিত দীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্মশতবার্ষিকীকে‘ গরিব কল্যাণ বর্ষ’ হিসেবে পালন করছে। ব্যাঙ্কগুলি লোকহিতে কাজ করার এই সুবর্ণসুযোগহাতছাড়া করবে না! ‘সবার পাশে– সবার উন্নয়ন’ এই শ্লোগানকে বাস্তবায়িত করতে নববর্ষের পূর্ব সন্ধ্যায় দেশের ১২৫কোটি নাগরিকদের জন্যে সরকার কিছু নতুন প্রকল্প আনছে। বন্ধুগণ,দেশ স্বাধীন হওয়ার এতবছর পরও দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষের নিজস্ব ঘর নেই। গত বছরের তুলনায় এ বছর ৬ শতাংশবেশি রবিচাষ হয়েছে। সারও গতবারের তুলনায় ৯ শতাংশ বেশি তোলা হয়েছে। সরকার লক্ষ্যরেখেছে যাতে কৃষকদের বীজ পেতে কিম্বা সার পেতে কোন অসুবিধা না হয়। এবার কৃষকভাইদের স্বার্থে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সরকার সিদ্ধান্তনিয়েছে যে আগামী তিন মাসের মধ্যে ৩ কোটি কিসান ক্রেডিট কার্ড বদলে রুপে কার্ডদেওয়া হবে। কিষাণ ক্রেডিট কার্ডে একটি খামতি ছিল যে এর মাধ্যমে টাকা তুলতে হলে ব্যাঙ্কে যেতেহ তো । এখন রুপে কার্ড হাতে পেলে তাঁরা এই কার্ড দিয়ে সরাসরি বিকিকিনি করতে পারবেন । সরকার এই এমএসএমই ক্ষেত্রের জন্যেও কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছেযাতে এই ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পপতিরা আরও কর্মসংস্থানের সুযোগ গড়ে তোলা যায়। সরকারের এইসিদ্ধান্তের ফলে ছোট দোকানদার, ছোট শিল্পগুলি বেশি ঋণ পাবে। কেন্দ্রীয় সরকারগ্যারান্টি দেওয়ায় সুদের হার কম হবে। সরকারব্যাঙ্কগুলিকে বলেছে, ক্ষুদ্র শিল্পের ক্ষেত্রে নগদ ঋণের পরিমাণ ২০ শতাংশ থেকেবাড়িয়ে ২৫ শতাংশ করতে। তাছাড়া ডিজিটাল মাধ্যমে লেনদেন করলে মূলধন ঋণ ২০ শতাংশ থেকেবাড়িয়ে ৩০ শতাংশ করার কথা বলা হয়েছে। নভেম্বরে এই ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত অনেকেই নগদ টাকা ব্যাঙ্কে জমা দিয়েছেন। ব্যাঙ্কগুলিকেবলা হয়েছে ব্যাঙ্কিং মূলধন নির্ণয়ের ক্ষেত্রে এই জমারাশির কথা যেন মাথায় রাখা হয়। কিছুদিন আগেইসরকার ছোট ব্যবসায়ীদের দেয় কর হ্রাস করেছিল। যে ব্যবসায়ী বছরে ২ কোটি টাকা পর্যন্তব্যবসা করে তাঁর করের গণনা ৮ শতাংশ আয় মেনে নিয়ে করা হয়। মুদ্রাযোজনার সাফল্য নিশ্চিতভাবেই উতসাহব্যঞ্জক । গত বছরপ্রায় তিন কোটি মানুষ এর দ্বারা লাভবান হয়েছেন। এখন দেশের সমস্ত জেলায়,৬৫০টিরও বেশি জেলায় সরকার গর্ভবতী মহিলাপিছু পঞ্জীকরণ, টিকাকরণ, পৌষ্টিক আহার আরপ্রসবের খরচ বাবদ ৬০০০টাকা করে আর্থিক সহায়তার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই টাকা গর্ভবতীমহিলাদের ব্যাঙ্ক আকাউন্টে ট্র্যান্সফার করা হবে। এখন সময় হয়েছে সকল রাজনৈতিক নেতা আর রাজনৈতিক দল যেন দেশের সৎ নাগরিকদের ভাবনাকে সম্মান জানিয়ে তাদেরআক্রোশের কারণগুলি বোঝেন। একথা সত্যি যে আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলি বিভিন্নসময়ে আচরণবিধি সংস্কারের সার্থক প্রয়াস নিয়েছে। এখন সময়ের প্রয়োজন রাজনীতিরউর্দ্ধে উঠেসকল দলের নেতারা একসঙ্গে বসে স্বচ্ছতাকে অগ্রাধিকার দিয়ে এমন পদক্ষেপনিক যাতে ভবিষ্যতে তাদের ও দলগুলির ছবি জনমনে পরিচ্ছন্ন হয়। এখন সময় এসেছে এই নিয়ে বিতর্ক হোক,পথ খোঁজা হোক। আমাদের দেশ সর্বদাই ইতিবাচক পরিবর্তনের পরিসর থাকে। এখন ডিজিটাল লেনদেনের ক্ষেত্রেও সমাজে ইতিবাচক পরিবর্তনদেখা যাচ্ছে। BHIM মানে ভারত ইন্টারফেস ফর মানি। আমি দেশের যুব সম্প্রদায়,ব্যবসায়ী ও কৃষকদের অনুরোধ করবো এই BHIM এর সঙ্গে যুক্ত হতে। আর কিছুক্ষণপর নতুন বছর ২০১৭ শুরু হবে। আজ থেকে ১০০ বছর আগে ১৯১৭ – তে মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে চম্পারণে প্রথমবার সত্যাগ্রহআন্দোলন শুরু হয়েছিল। ১০০ বছর পরও আমরা দেখেছি এ দেশের মানুষ সততা ও সদাচারেরপ্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখেন। নতুন বছরেরনতুন সূর্যকিরণ নতুন সাফল্যের সংকল্প নিয়ে আসছে। আসুন আমরা সবাই মিলে এগিয়ে যাই,সকল বাঁধা পেরিয়ে এগিয়ে যাই… এক উজ্জ্বল নতুন ভবিষ্যৎ গড়ে তুলি। স্বামী দয়ানন্দসরস্বতীর জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।এক বার্তায় তিনি বলেছেন : “স্বামী দয়ানন্দসরস্বতীর জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধা জানাই। এশীয় কুস্তি চ্যাম্পিয়ানশিপে সোনার পদকজয়ী শ্রী বজরং পুনিয়াকে অভিনন্দিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “ এশীয় কুস্তিচ্যাম্পিয়ানশিপে সোনা জেতার জন্য অভিনন্দন বজরং পুনিয়াকে। শ্রী মোদী বলেন, অ্যারো শো দেশের প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রকে সমস্ত বিশ্বের সামনে উপস্থাপন করার মঞ্চ। প্রধানমন্ত্রী জানান যে, প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্র বিনিয়োগ টানবে, উৎপাদন বাড়াবে, নানা উদ্যোগের সহায়ক হবে, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার বৃদ্ধি ও অর্থনৈতিক বিকাশের মাত্রা বাড়াবে। প্রধানমন্ত্রী জানান যে দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রায় দুই লক্ষ কর্মচারী এবং কয়েক হাজার ইঞ্জিনিয়ার ও বৈজ্ঞানিক নিয়োজিত রয়েছেন। তাঁদের প্রয়াসে বার্ষিক প্রায় ৭০০ কোটি ডলার মূল্যের দ্রব্য উৎপন্ন হয়। তবে, সেখানেও হাজার হাজার মানুষ কর্মরত রয়েছেন বলে জানান শ্রী মোদী। তা সত্ত্বেও প্রায় ৬০ শতাংশের প্রতিরক্ষা সামগ্রী আমদানি করা হচ্ছে, বলেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি আরও বলেন, এই আমদানিকৃত প্রতিরক্ষা সামগ্রীর জন্য এক আজার কোটি ডলার ব্যয় করা হচ্ছে। শ্রী মোদী জানান যে গবেষণা বলছে, আমদানি যদি ২০ থেকে ২৫ শতাংশ কমানো হয়, দেশে এক লক্ষ থেকে এক লক্ষ কুড়ি হাজার অতিরিক্ত উচ্চদক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে। এছাড়া, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে দেশে উৎপাদিত দ্রব্যের ক্রয় ৪০ থেকে ৭০ শতাংশ বাড়ালে, প্রতিরক্ষা শিল্পের উৎপাদনের হার দ্বিগুণ হবে। এর ফলে, প্রত্যক্ষভাবে এবং সহযোগী উৎপাদন ও পরিষেবা ক্ষেত্রে বহু লোকের কর্মসংস্থান হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী জানান, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রের ক্রয় নীতি ও পদ্ধতির সংস্কার করা হচ্ছে। তিনি জানান, ভারতে উৎপাদিত সামগ্রী স্পষ্টতই অগ্রাধিকার পাবে। এছাড়া ক্রয় পদ্ধতিকে সহজ, দায়বদ্ধ ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের উপযোগী করা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, উৎপাদন ক্ষেত্রের গবেষণা ও বিকাশের জন্য সরকারের সহায়তার প্রয়োজন রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান যে, এটি নিশ্চিত করতে হবে যাতে কর ব্যবস্থা দেশী উৎপাদন ও আমদানির মধ্যে ভেদাভেদ না করে। প্রধানমন্ত্রী এও বলেন, প্রতিরক্ষা শিল্প সাফল্যমণ্ডিত হবে যদি উৎপাদন ক্ষেত্রকে রূপান্তরিত করা যায়। তার জন্য প্রয়োজন উন্নত পরিকাঠামো, ব্যবসা করার উপযোগী পরিবেশ, স্পষ্ট বিনিয়োগ নীতি, ব্যবসা করার স্বাচ্ছন্দ্য ও সহজে প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের প্রাপ্তি। শ্রী মোদী বলেন, প্রতিরক্ষা শিল্পের জন্য উচ্চ-দক্ষতাসম্পন্ন মানবসম্পদের প্রয়োজন রয়েছে। কেবল অ্যারোস্পেস শিল্পে আগামী দশ বছরে দুই লক্ষ কর্মীর প্রয়োজন হবে। ভারতীয় বিশেষজ্ঞরা নৌরুর উপকূল এলাকায় জাহাজ নোঙ্গর করানোর অন্তরায়গুলো দূর করতে প্রয়োজনীয় মেরামতির ব্যাপারে সাহায্য করবেন বলেও উভয় পক্ষ সম্মত হয়| শ্রী বলরাজ মাধোক-এর মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বলরাজ মাধোকজির মতাদর্শগত অঙ্গীকার ছিল যথেষ্ট শক্তিশালী, চিন্তাভাবনার স্বচ্ছতাও ছিল অসাধারণ। দেশ ও সমাজের প্রতি তিনি ছিলেন নিঃস্বার্থভাবেই নিবেদিতপ্রাণ। বহু সময় বলরাজ মাধোকজির সঙ্গে মতবিনিময়ের সৌভাগ্য আমার হয়েছিল। তাঁর পরিবার-পরিজনদের জানাই আমার গভীর সমবেদনার কথা।” ৫,৫০৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২৯.৭০৭ কিলোমিটার দীর্ঘ নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা মেট্রোরেল প্রকল্প স্থাপনে বুধবার সম্মতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। সংসদ ভবনে বিদ্যুৎচালিতএক বাসের উদ্বোধন ও প্রদর্শন সম্পর্কিত এক অনুষ্ঠানে আজ উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ডিজেলচালিত একটি বাসকে ব্যাটারিচালিত বৈদ্যুতিক বাসে রূপান্তরিত করা হয়েছে। প্যারিসের সাম্প্রতিক জলবায়ু সম্মেলন সি ও পি-২১-এর কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সম্মেলনের আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। দ্বিতীয় উদ্যোগটি হল সূর্যালোকের প্রাচুর্য রয়েছে এই ধরণের দেশগুলিকে নিয়ে এক আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা গড়ে তোলা। এর সদর দপ্তর হবে দিল্লিতে। কেন্দ্রীয়সরকারের অনুমোদিত নতুন বেতনক্রম চালু হবে ০১.০১.২০১৬ থেকে। এর ফলে, প্রতি বছরকেন্দ্রীয় সরকারের অতিরিক্ত আর্থিক দায়দায়িত্ব বৃদ্ধি পাবে ৯,৮০০ কোটি টাকার মতো। রাজ্য সরকারেরআর্থিক সহায়তাপুষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষেত্রে সংশোধিত বেতনক্রম চালুরবিষয়টি নির্ভর করবে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির প্রশাসনিক কর্তৃপক্ষের তা গ্রহণ করারওপর। তবে, বেতনক্রম সংশোধনের ফলে রাজ্যগুলির ওপর যে অতিরিক্ত আর্থিক দায়দায়িত্ববর্তাবে তার অনেকটাই বহন করবে কেন্দ্রীয় সরকার। আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যে চেন্নাইয়ের এক মূল্যবান অবদানরয়েছে। তাই এই ঘটনা আমাদের সকলকেই গর্বিত করে তুলেছে”। উচ্চগতিরমেট্রো রেল চালু করার লক্ষ্যে মূলধন সম্পদের ব্যাপক চাহিদার যোগান দিতেসরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্ব যে একান্ত জরুরি একথার উল্লেখ করা হয় সংশ্লিষ্টনীতিতে। নতুন নতুন মেট্রো রেল প্রকল্পের প্রস্তাবগুলি সম্পর্কে যথোপযুক্ত সমীক্ষানিরপেক্ষ কোন তৃতীয় সংস্থাকে দিয়ে চালানোরও প্রস্তাব করা হয়েছে। এই নীতির আওতায় মেট্রো রেল প্রকল্পে রাজ্যগুলির পক্ষ থেকে বিনিয়োগ ও সম্পদেরযোগান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে উদ্ভাবনমূলক পন্থা-পদ্ধতি অবলম্বন করার প্রস্তাব করাহয়েছে। প্রয়োজনে মেট্রো রেল প্রকল্পের জন্য কর্পোরেট বন্ড ইস্যু করার মাধ্যমেপ্রয়োজনীয় মূলধনী সম্পদ রাজ্যগুলি সংগ্রহ করতে পারবে। ঐ আটটি শহর ছাড়াও দেশের মোট ১৩টি শহরে বর্তমানে মোট৫৩৭ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকল্প রূপায়ণের কাজ এগিয়ে চলেছে। যে নতুন শহরগুলি মেট্রোপ্রকল্পের সুবিধা পেতে চলেছে তার মধ্যে রয়েছে – হায়দরাবাদ (৭১ কিলোমিটার), নাগপুর(৩৮ কিলোমিটার), আমেদাবাদ (৩৬ কিলোমিটার), পুণে (৩১.২৫ কিলোমিটার) এবং লক্ষ্ণৌ (২৩কিলোমিটার)। ১০টি নতুন শহর সহ দেশের মোট ১৩টি শহরে ৫৯৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যব্যাপীমেট্রো রেল প্রকল্প গড়ে তোলার কাজ বর্তমানে সমীক্ষা ও পরিকল্পনার বিভিন্ন পর্যায়েরয়েছে। রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি শ্রী ভ্লাদিমির পুতিন বুধবার সন্ধ্যায় ক্রেমলিনে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক আলাপচারিতায় অংশগ্রহণ করেন। রুশ রাষ্ট্রপতি পুতিন প্রধানমন্ত্রীকে মহাত্মা গান্ধীর দিনলিপির একটি পাতা উপহার দেন। এই পাতাটিতে গান্ধীজীর নিজের হাতে লেখা নোট রয়েছে। রাষ্ট্রপতি পুতিন প্রধানমন্ত্রীকে অষ্টাদশ শতাব্দীর শেষ পর্যায়ে বাংলা প্রদেশে প্রস্তুত, একটি ভারতীয় তরবারি উপহার দেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার (১৭ সেপ্টেম্বর) নিজের কেন্দ্র বারাণসীতে স্কুলের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে প্রায় ৯০ মিনিট ধরে কথাবার্তা বলেন। প্রধানমন্ত্রী সেখানে পৌঁছতেই নারুর গ্রামের একটি প্রাথমিক স্কুলের পড়ুয়ারা অত্যন্ত উৎসাহের সঙ্গে তাঁকে স্বাগত জানায়। শ্রী মোদীও ছাত্রছাত্রীদের বিশ্বকর্মা জয়ন্তীর শুভেচ্ছা জানান ও বলেন, নানারকম দক্ষতা অর্জন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার। ছাত্র হিসেবে প্রশ্ন করা খুবই জরুরি বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি পড়ুয়াদের কখনো প্রশ্ন করতে ভয় না পাওয়ার পরামর্শ দেন। প্রশ্ন করা শিক্ষাগ্রহণের একটি মূল বৈশিষ্ট বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। স্বেচ্ছাসবী সংস্হা ‘রুম টু রিড’-এর সহায়তাপ্রাপ্ত কমবয়সী ছেলেমেয়েদের সঙ্গে বিশ কিছুক্ষণ সময় কাটান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী তাদের মন দিয়ে পড়াশুনা করার ও খেলাধূলায় আগ্রহ বাড়িয়ে তোলার পরামর্শ দেন। ১৭ তারিখ সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী বারাণসীর রাস্তাঘাট পরিদর্শন করে শহরের উন্নয়নমূলক কাজকর্ম ঘুরে দেখেন। কিছুক্ষণের জন্য কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরে থেমে শ্রী মোদী প্রার্থনা করেন। “জাতীয় ভোটার দিবসে প্রত্যেককেই অভিনন্দন জানাই। আমি দেশের বৈধ সকল ভোটদাতাদের বিশেষত, তরুণ ও যুবকদের আহ্বান জানাই তাঁদেরনাম ভোটার তালিকায় নথিভুক্তির মাধ্যমে এবং নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশগ্রহণের মধ্যদিয়ে আমাদের গণতন্ত্রকে আরও শক্তিশালী করে তোলার জন্য। এবছরের পয়লা জানুয়ারি থেকে দেশের সবকটি জেলাতেই এই কর্মসূচিটিরপ্রসার ঘটানো হয়েছে। কাবুলে জঙ্গিহানার তীব্র নিন্দা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “কাবুলেরজঙ্গিহানার কঠোর নিন্দা জানাই। যাঁরা সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন, তাঁদেরপরিবার-পরিজনদের সমব্যথী আমিও। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার ড্রাগের চাহিদা হ্রাস এবংনার্কোটিক ড্রাগ বা নেশাজাত ওষুধ, সাইকোট্রপিক সামগ্রী বা মস্তিষ্ককেতন্দ্রাচ্ছন্ন করার সামগ্রী, প্রিকারসর রাসায়নিকের অবৈধ অনুপ্রবেশ প্রতিরোধ ওসংশ্লিষ্ট বিষয়ে ভারত ও নেপালের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (মউ) স্বাক্ষরের অনুমোদন দিল| ড্রাগ সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এই সহযোগিতার ফলে দুই দেশের মধ্যে নার্কোটিক ড্রাগ, সাইকোট্রপিকসামগ্রী, প্রিকারসর রাসায়নিকের অবৈধ অনুপ্রবেশ দমন করা যাবে বলে আশা করা যাচ্ছে| এই মউ-এর ফলেসংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ যে বিষয়গুলোতে প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে, তা হচ্ছে:– (১) নার্কোটিকড্রাগ, সাইকোট্রপিক সামগ্রী, প্রিকারসর রাসায়নিকের অবৈধ অনুপ্রবেশকে কার্যকরভাবেমোকাবিলা করার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে পারস্পরিক সহযোগিতাকে উন্নত করবে এবং প্রতিরোধ, সচেতনতা, শিক্ষা, সামাজিককর্মসূচি, চিকিত্সা ও পুনর্বাসনের মাধ্যমে ড্রাগের চাহিদা হ্রাসে সহযোগিতা করবে|এবং এই সমঝোতাপত্রটি আন্তর্জাতিক বৈজ্ঞানিক এবং প্রযুক্তিগত সহযোগিতার কাঠামোর মধ্যে থেকেই আইসিএমআর এবং ইনসার্নের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়ে কাজ করতে সাহায্য করবে। মউ-এর মধ্যেসহযোগিতার নিম্নলিখিত বিষয় রয়েছে: ১)চিকিত্সক, মেডিক্যাল আধিকারিক, অন্যান্য স্বাস্থ্য পেশাজীবী এবং বিশেষজ্ঞদেরআদানপ্রদান; ২)মানবসম্পদ, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সুবিধা নির্মাণেসহায়তা; ৩)স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মানবসম্পদের স্বল্পকালীন প্রশিক্ষণ; ৪)ফার্মাসিউটিক্যাল ও মেডিক্যাল যন্ত্রপাতিতে নিয়ন্ত্রণ এবং তথ্যের আদানপ্রদান; ৫) ওষুধশিল্প এবং দুই পক্ষের চিহ্নিত অন্যান্য বিষয়ে বানিজ্য উন্নয়নের সুযোগে সহায়তা; ৬) জেনেরিকএবং আবশ্যিক ওষুধের সংগ্রহ এবং ওষুধ সরবরাহে সহায়তা; ৭) স্বাস্থ্যযন্ত্রপাতি এবং ওষুধ সগ্রহ; ৯) পতঙ্গবাহিত রোগ ও সংক্রামক রোগের ক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে সহযোগিতা; ১০) খাদ্যশিল্পের সঙ্গে যুক্তদের গবেষণা ও প্রশিক্ষণ; ১১) খাদ্যসুরক্ষা ও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসের জন্য নাগরিকদের তথ্য প্রদান ও যোগাযোগ; ১২)সহযোগিতার অন্য আরও ক্ষেত্র যা উভয়পক্ষের পারস্পরিক সিদ্ধান্তে স্থিরীকৃত হতেপারে| মায়ানমারেরসিতাগু আন্তর্জাতিক বৌদ্ধঅ্যাকাডেমির প্রতিষ্ঠাতাতথা আচার্য পরম শ্রদ্ধাভাজনডঃ আসিন ন্যানিসারা, শ্রীলঙ্কারভূতপূর্ব রাষ্ট্রপতি মাননীয়াশ্রীমতী চন্দ্রিকা বন্দরনায়েককুমারতুঙ্গা, জাপানেরবিদেশ মন্ত্রী মিঃ মিনোরুকিউচি, মন্ত্রিসভায়আমার সহকর্মী ডঃ মহেশ শর্মাও কিরেন রিজিজু, বৌদ্ধধর্মই যেখানে জীবনের মূলঅনুপ্রেরণা সেখানকার কয়েকটিদেশের আধ্যাত্মিক নেতৃবৃন্দএবং বিদ্বজ্জনের এটি একটিবিশেষ মহাসম্মেলন। কিন্তু, সময়েরসঙ্গে সঙ্গে মানুষের দুঃখ-দুর্দশা, অসুস্থতা, জরাএবং মৃত্যু সম্পর্কে তাঁর একচেতনাবোধের উন্মেষ ঘটে। পার্থিবসম্পদই যে জীবনের একমাত্রলক্ষ্য নয়, এইবিশ্বাসে তিনি ছিলেন স্থিরও অবিচল। মানুষের অন্তর্নিহিতঅস্তিত্ব ঐশ্বরিকতাকেই সূচিতকরে। মানুষেরদুঃখ-দুর্দশারমূলে যে নিষ্ঠুর দ্বন্দ্ব ওসংঘাত তা তাঁকে আঘাত দিত সবচেয়েবেশি। তাঁর বিশ্ব দর্শনেরঅবিচ্ছেদ্য অঙ্গই ছিল অহিংসা। সংঘাতপরিহার, পরিবেশসচেতনতার প্রসার এবং মুক্তও আন্তরিক আলাপ-আলোচনা- মহাসম্মেলনেরএই তিনটি মূল বিষয় গৌতম বুদ্ধেরশিক্ষা ও বাণীরই সোচ্চার ঘোষণামাত্র। প্রথমবিষয়টিতে যে সংঘাত বা দ্বন্দ্বেরকথা বলা হয়েছে তা রয়েছে মানুষেমানুষে, বিভিন্নধর্ম ও সম্প্রদায়ের মধ্যেএবং জাতিতে জাতিতে। ভোগেরক্ষেত্রে ব্যক্তির নৈতিকসংযম এবং পরিবেশ সচেতনতাসম্পর্কে মূল্যবোধ এশিয়ারদার্শনিক ঐতিহ্যের মধ্যেইনিহিত, বিশেষতহিন্দু ও বৌদ্ধ ধর্মের মধ্যেইতার মূল প্রোথিত। কনফুসিয়াসবাদ, তাওবাদ ইত্যাদির মতোই বৌদ্ধবাদেওপরিবেশ রক্ষায় দায়িত্বশীলতারওপর জোর দেওয়া হয়েছে। মাতৃবসুন্ধরা সম্পর্কে হিন্দুও বৌদ্ধবাদে যে সুস্পষ্ট মতরয়েছে তার পথ অনুসরণ করেইপ্রয়োজনীয় পরিবর্তনের বিষয়টিসম্পর্কে চিন্তাভাবনা করাযেতে পারে। জলবায়ুপরিবর্তন সমগ্র বিশ্বের কাছেইএকটি বড় চ্যালেঞ্জ। এজন্যপ্রয়োজন মানুষের সমষ্টিগতউদ্যোগ এবং সুনির্দিষ্টপদক্ষেপ। ভারতে মানুষেরবিশ্বাস ও প্রকৃতির মধ্যেসেই প্রাচীনকাল থেকেই রয়েছেএক গভীর সম্পর্ক। পরিবেশ ওবৌদ্ধবাদ নিবিড়ভাবেই পরস্পরেরসঙ্গে সম্পর্কিত। বৌদ্ধঐতিহ্যের যে ঐতিহাসিক ওসাংস্কৃতিক বহিঃপ্রকাশ দেখাযায়, তাপ্রকৃতির সঙ্গে একাত্মবোধেরইনামান্তর মাত্র। কারণ, বৌদ্ধধর্মমত অনুসারে, কোনওকিছুরই অস্তিত্ব পৃথক নয়।পরিবেশের মধ্যে অপবিত্রতাথাকলে তা মানুষের মনকেও কলুষিতকরে। একইভাবে মানুষের অশুদ্ধমন পরিবেশ দূষণের কারণ ঘটায়।তাই, পরিবেশকেদূষণমুক্ত করতে প্রয়োজনআত্মশুদ্ধি। পরিবেশগতসমস্যা প্রকৃতপক্ষে মানুষেরমনের ভারসাম্যহীনতারই একধরণের প্রতিফলন। ভগবান বুদ্ধএই কারণে প্রাকৃতিক সম্পদসংরক্ষণের বিষয়টিতে বিশেষগুরুত্ব দিয়েছিলেন। জল সংরক্ষণেরউপায় তিনি নির্দেশ করেছিলেনএবং জলসম্পদ দূষিত না করারউপদেশ দিয়েছিলেন ধর্মগুরুদের।প্রকৃতি, অরণ্য, গাছপালাএবং সব কিছুই ভালো রাখা ও ভালোথাকার এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছেভগবান বুদ্ধের শিক্ষাদর্শে। ঐ গ্রন্থে মুখ্যমন্ত্রীহিসেবে প্রকৃতি সম্পর্কেআমার কাজকর্মের অভিজ্ঞতারকথা লিপিবদ্ধ করেছিলাম। ব্যক্তিগতভাবেবেদ সাহিত্য থেকেই মানুষ ওপ্রকৃতির ঘনিষ্ঠ বন্ধন সম্পর্কেআমি শিক্ষালাভ করি। মহাত্মাগান্ধীর’Doctrine of Trusteeship’ সম্পর্কেআমরা সকলেই সুবিদিত। এই আলোচনারপরিপ্রেক্ষিতে আমার মনে হয়সমৃদ্ধ প্রাকৃতিক সম্পদকেভবিষ্যত প্রজন্মের জন্যসুরক্ষিত রাখার দায়িত্ব রয়েছেবর্তমান প্রজন্মেরই। বিষয়টিতাই শুধুমাত্র জলবায়ু পরিবর্তনেরমধ্যেই সীমাবদ্ধ নয় বরং এটিকেবলা চলে প্রকৃতির প্রতিন্যায়বিচার। আর একথা আমি বলবোবারে বারেই। আমারমতে, জলবায়ুপরিবর্তনের ফলে দরিদ্র ওঅবহেলিত মানুষই ক্ষতিগ্রস্তহয়েছে সবেচেয়ে বেশি। যখনপ্রাকৃতিক বিপর্যয় দেখা দেয়, এইধরণের মানুষরাই তার শিকারহয়ে পড়ে। বন্যার সময় তারা হয়গৃহহীন, ভূমিকম্পেতারা হয় নিরাশ্রয়, খরামরশুমে তারা থাকে অভুক্ত এবংপ্রচন্ড শীত ও ঠান্ডায় তারাকষ্ট ভোগ করে সবচেয়ে বেশি। জলবায়ুপরিবর্তনের ফলে মানুষ যেভাবেদুর্দশার সম্মুখীন হয়ে পড়ছেতাতে আমরা চুপ করে বসে থাকতেপারি না। সেই কারণেই আমি বিশ্বাসকরি যে, আমাদেরদৃষ্টিভঙ্গী জলবায়ু পরিবর্তনেরথেকেও জলবায়ু সম্পর্কিতন্যায়-বিচারেরদিকে আবদ্ধ হওয়া প্রয়োজন। মহাসম্মেলনেতৃতীয় বিষয়টি হল, আলাপ-আলোচনারপ্রসার ও অগ্রগতি। এজন্যআদর্শবাদের থেকেও বেশি প্রয়োজনদার্শনিক দৃষ্টিভঙ্গির।উপযুক্ত আলাপ-আলোচনারপথ প্রশস্ত না হলে সংঘাতপরিহারের দুটি বিষয়ের কোনওটিইসম্ভব হবে না। সংঘাতপরিহারের জন্য আমরা যে সমস্তপ্রস্তাব গ্রহণ করে থাকি তারসীমাবদ্ধতা দিনদিনই প্রকটহয়ে পড়ছে। হিংসা ও রক্তপাতবন্ধে আমাদের প্রয়োজন সমবেতভাবেএক কৌশলগত প্রচেষ্টা চালিয়েযাওয়া। এইসম্মেলনের মূল প্রতিপাদ্যসংঘাত পরিহার ও পরিবেশ সচেতনতাএই দুটি বিষয় রয়েছে আলাপ-আলোচনারমূল কেন্দ্রে। অন্যের সাথেআমাদের আদর্শগত ফারাক- এরমধ্যে নিজেদের সীমাবদ্ধ নারেখে বরং দার্শনিকতায় বেশিউত্তরণই আমাদের প্রয়োজন।ধর্মীয় বা ধর্মনিরপেক্ষ যেকোনও ধরণের আদর্শবাদ থেকেইদার্শনিকতার দিকে আমাদেরদৃষ্টি ফেরানো কেন প্রয়োজনতা আমাদের বোঝাতে হবে সমগ্রবিশ্ববাসীকে। গত বছর রাষ্ট্রসঙ্ঘেভাষণ দান কালে একথা সংক্ষেপেউল্লেখও করেছিলাম। একদিন পরেবৈদেশিক সম্পর্ক পরিষদে আমিযখন বক্তব্য পেশ করছিলাম, তখনএই বিষয়টি বিশদভাবে ব্যাখ্যাওকরেছিলাম। সুতরাং, হিন্দুও বৌদ্ধ ধর্ম শুধুমাত্রবিশ্বাসের মধ্যেই আবদ্ধ নয়, বরংদার্শনিকতার মধ্য দিয়ে তাক্রমপ্রসারিত। আমিদৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আলাপ-আলোচনারমাধ্যমেই সমস্ত সমস্যার সমাধানসম্ভব। আগে মানুষ বিশ্বাসকরতো যে, যারজোর বেশি, সেইবেশি ক্ষমতাশালী। কিন্তুআজকের দিনে চিন্তাভাবনা এবংফলপ্রসূ আলাপ-আলোচনাইহল ক্ষমতার মূল উৎস। যুদ্ধেরবিরূপ প্রতিক্রিয়া ও ক্ষয়ক্ষতিআমরা লক্ষ্য করেছি। বিংশশতাব্দীর প্রথমার্ধে দুটিবিশ্ব যুদ্ধের ভয়ঙ্করতা মানুষলক্ষ্য করেছে। আমাদেরসকলেরই আশু কর্তব্য হল, ভবিষ্যতপ্রজন্মের জন্য শান্তি, মর্যাদাএবং পরস্পরের প্রতি শ্রদ্ধারভিত্তিতে গড়ে ওঠা এক জীবনসুনিশ্চিত করা। আদি শঙ্করারীতিনীতি ও আচার-আচরণেরপ্রবক্তা এই প্রবীন পণ্ডিতেরসঙ্গে তর্ক ও আলোচনায় প্রতিষ্ঠাকরতে চেয়েছিলেন যে, মুক্তিবা মোক্ষ লাভের জন্য আচার-আচরণেরকোনও প্রয়োজন নেই। অন্যদিকে, মন্ডনমিশ্র এই যুক্তি ভ্রান্ত বলেপ্রমাণ করতে চেয়েছিলেন। মানুষের মনেক্রোধ জন্ম নেওয়ার অর্থই হলতাঁর পরাজয়। এই যুক্তিতে মন্ডনমিশ্র’কেশেষ পর্যন্ত পরাজয় স্বীকারকরতে হল। ভগবানবুদ্ধ আধ্যাত্মিক দিক থেকেআমাদের সকলকে সম্মিলিতভাবেভালো থাকার পথের সন্ধান দিয়েছেন।ঠিক যেভাবে বিশ্ব বাণিজ্যআমাদের মিলিত অর্থনৈতিকসমৃদ্ধি এবং ডিজিটাল ইন্টারনেটআমাদের মিলিত মেধাশক্তিরপথনির্দেশ করেছে। একবিংশশতাব্দীতে দেশ, ধর্মবিশ্বাস, রাজনৈতিকআদর্শ সমস্ত কিছুর সীমা অতিক্রমকরে ভগবান বুদ্ধ মানুষের মধ্যেসমঝোতা, ধৈর্য, সহনশীলতাও সহমর্মিতার এক সেতুবন্ধনেরভূমিকা পালন করে চলেছেন। আপনারাআজ এমন এক দেশে উপস্থিত যা তারবৌদ্ধ ঐতিহ্যের জন্য অত্যন্তগর্বিত। গুজরাটে আমার নিজেরশহর ভাদনগর হল সেই সমস্ত শহরেরইএকটি যেখানে বৌদ্ধ নিদর্শনছড়িয়ে রয়েছে এবং চিনের পরিব্রাজকজুয়াং জাং এখানে ভ্রমণ করেগেছেন। বৌদ্ধধর্মের পবিত্র স্থান ছড়িয়েরয়েছে আমাদের এই সার্ক অঞ্চলে: লুম্বিনি, বুদ্ধগয়া, সারনাথ, কুশিনগরইত্যাদি ইত্যাদি। ভারতেবৌদ্ধ ঐতিহ্যের বিকাশ ও উন্নয়নেআমার সরকার সম্ভাব্য সকল রকমপ্রচেষ্টাই চালিয়ে যাচ্ছে।এশিয়ায় বৌদ্ধ ঐতিহ্যকে তুলেধরার কাজে ভারত রয়েছে নেতৃত্বেরভূমিকায়। আগামীদিনে বুদ্ধগয়ায় আপনাদের সকলেরআমন্ত্রণ। · সৌদি যুবরাজকে রাষ্ট্রপতি ভবনে গত বিশে ফেব্রুয়ারি আনুষ্ঠানিক অভ্যর্থনা দেওয়া হয়। রাষ্ট্রপতি যুবরাজের সম্মানে এক ভোজসভার আয়োজন করেন। · ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে যে মৈত্রী ও আন্তরিকতার সম্পর্ক রয়েছে তা এই দুই দেশের কয়েক শতাব্দী প্রাচীন অর্থনৈতিক ও আর্থ-সামাজিক বন্ধনের মাধ্যমে প্রতিফলিত হয়। দুই দেশের মধ্যে ভৌগলিক নৈকট্য, সভ্যতাগত যোগসূত্র, সাংস্কৃতিক যোগাযোগ, পরিবেশগত বৈশিষ্ট্য এবং প্রগতিবাদী মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ রয়েছে। অভিন্ন চ্যালেঞ্জ ও সুযোগ-সুবিধাগুলি দুই দেশের এই মজবুত সম্পর্কে আরও গতি সঞ্চার করেছে। এই কর্মশিবিরে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ গড়ে তোলা ও বিনিয়োগের জন্য ৪০টিরও বেশি ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয়। · সৌদি যুবরাজের ভারত সফরকালে নিম্নলিখিত সমঝোতাপত্রগুলি স্বাক্ষরিত হয়েছে- Øভারতের জাতীয় বিনিয়োগ ও পরিকাঠামো তহবিলে লগ্মি সম্পর্কিত সমঝোতাপত্র Øপর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র Øআবাসন ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র Øইনভেস্ট ইন্ডিয়া এবং সৌদি আরব জেনারেল ইনভেস্টমেন্ট কর্তৃপক্ষের মধ্যে কাঠামোগত সহযোগিতা কর্মসূচি Øঅডিও-ভিস্যুয়াল আদান-প্রদানের জন্য সম্প্রচার ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র Øআর্ন্তজাতিক সৌর-জোটে সৌদি আরবকে সামিল করতে চুক্তি · সাম্প্রতিক বছরগুলিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের ইতিবাচক অগ্রগতির বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে উভয়পক্ষই পণ্য সামগ্রী লেনদেন, বিশেষ করে তেল বর্হিভূত ক্ষেত্রে বাণিজ্যিক যে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে, তা কাজে লাগানোর ওপর জোর দেয়। ২০১৮র ফেব্রুয়ারি মাসে রিয়াধে ভারত-সৌদি যৌথ কমিশনের দ্বাদশ বৈঠকে অর্থনৈতিক, বাণিজ্যিক, বিনিয়োগ, সংস্কৃতি ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে যে আলোচনা হয়, দুই পক্ষই তাতে স্বাগত জানান। ·উভয় পক্ষই দুই দেশের মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ বাড়ানোর প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন এবং রপ্তানী ক্ষেত্রের বাধা-বিপত্তিগুলি দূর করার ব্যাপারে সহমত প্রকাশ করেন। ·উভয় পক্ষই সৌদি রাজার ‘২০৩০ পরিকল্পনা’এবং ভারতের ফ্ল্যাগশিপ কর্মসূচিগুলির (মেক ইন ইন্ডিয়া, স্টার্টআপ ইন্ডিয়া, স্মার্ট সিটি, ডিজিটাল ইন্ডিয়া প্রভৃতি) সঙ্গে সঙ্গতি বজায় রেখে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করার ব্যাপারে সম্মত হন। সৌদি আরবের বৃহৎ প্রকল্পগুলিতে ভারতীয় বেসরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত্ব সংস্হার বিনিয়োগ তথা বিশেষজ্ঞদের কাজে লাগাতে সৌদি আরব প্রস্তুত বলে জানানো হয়। ভারত ও সৌদি আরবের আর্থিক ক্ষেত্রে ইতিবাচক পরিবর্তনের বিষয়টিতেও দুই পক্ষ সহমত প্রকাশ করেন। ·দুই দেশের সরকার, সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা, বর্তমান বাণিজ্য সংক্রান্ত নিয়মনীতিগুলিকে আরও সরল ও যুক্তিসঙ্গত করে তোলা সহ গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগ নিয়মনীতি শীথিল করতে যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, উভয় পক্ষই তাকে স্বাগত জানান। ·২০১৬-তে প্রধানমন্ত্রী মোদী রিয়াধ সফরের সময় সৌদি আরবের জেনারেল ইনভেস্টমেন্ট কর্তৃপক্ষ এবং ইনভেস্ট ইন্ডিয়ার মধ্যে কাঠামোগত সহযোগিতাচুক্তি স্বাক্ষরের পর লগ্নির পরিবেশে যে ইতিবাচক পরিবর্তন এসেছে, উভয়পক্ষই তাকে স্বাগত জানান। উভয়পক্ষই নিজেদের দেশে বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধাগুলির পূর্ণ সদ্ব্যবহারে শিল্প-বাণিজ্য মহলের প্রতি আহ্বান জানান। ·সৌদি আরবে শিল্প শহর ও বন্দরগুলিতে যে অত্যাধুনিক পরিকাঠামো ও পরিবহন পরিষেবা ব্যবস্হা গড়ে তোলা হয়েছে তাকে কাজে লাগানোর জন্য সেদেশের রাজপুত্র ভারতীয় সংস্হাগুলিকে আমন্ত্রণ জানান। ·সৌদি যুবরাজ শক্তি, পরিশোধন, পেট্রোরসায়ন, পরিকাঠামো, কৃষি, খনিজ ও খনি, উৎপাদন, শিক্ষা ও স্বাস্হ্যক্ষেত্রে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি যে লগ্নির কথা ঘোষনা করেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানান। ·সৌদি আরবের পক্ষ থেকে ভারতে শক্তি, শোধনাগার, পেট্রোরসায়ন, পরিকাঠামো, কৃষি, খনিজ ও খনি, উৎপাদন, শিক্ষা ও স্বাস্হ্যক্ষেত্রে বিনিয়োগের ব্যাপারে যে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে, প্রধানমন্ত্রী তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। ·আবাসন ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তুলতে এবং সৌদি আরবের আবাসন প্রকল্পগুলিতে ভারতীয় সংস্হাগুলির অংশগ্রহণে উৎসাহ দিতে যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছে, উভয়পক্ষই তাকে স্বাগত জানিয়েছেন। ·বিপর্যয় মোকাবিলার ক্ষেত্রে এক উপযুক্ত পরিকাঠামো গড়ে তোলার লক্ষে জোট গঠনের জন্য প্রধানমন্ত্রী যে উদ্যোগ নিয়েছেন সৌদি যুবরাজ তার উচ্ছসিত প্রশংসা করে বলেছেন, বিপর্যয় মোকাবিলা ও তার প্রতিরোধের লক্ষ্যে এ এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ। ভারত-সৌদি আরব শক্তি আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ব্যাপারেও দুই পক্ষ সহমত হয়েছেন। শক্তি ক্ষেত্রে ক্রেতা-বিক্রেতার সম্পর্কে পরিবর্তন ঘটিয়ে পেট্রোরসায়ন প্রকল্পগুলিতে বিনিয়োগ তথা যৌথ উদ্যোগ গড়ে তুলে এই সম্পর্ককে কৌশলগত অংশীদারিত্বে পরিণত করার বিষয়ে উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছে। ·অশোধিত তেল ও পেট্রোজাত পণ্যের ক্ষেত্রে ভারতের ক্রমবর্ধমান চাহিদা পূরণে সৌদি যুবরাজ পুনরায় আশ্বাস দিয়ে বলেছেন, অন্যান্য উৎস থেকে সরবরাহ বিঘ্নিত হলে ভারতের চাহিদা মেটাতে তার দেশ সাহায্য দেবে। ·পেট্রোলিয়াম সংরক্ষণে ভারতের কৌশলগত উদ্যোগে সৌদি আরবের অংশগ্রহণকে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানিয়েছেন। ·আন্তর্জাতিক সৌর জোটে সৌদি আরবের সামিল হওয়ার সিদ্ধান্তকে প্রধানমন্ত্রী স্বাগত জানিয়েছেন। এই প্রসঙ্গে উভয় পক্ষের তরফে বলা হয়েছে, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিক্ষেত্রে সম্ভাব্য সহযোগিতা গড়ে তোলাই নয়, বরং গবেষনা ও উন্নয়ন খাতে বিনিয়োগেরও বিপুল সুযোগ রয়েছে। ·উভয় পক্ষই দূর নিয়ন্ত্রণ, উপগ্রহ-ভিত্তিক যোগাযোগ এবং দিক নির্দেশ ব্যবস্হা সহ মহাকাশ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিক্ষেত্রে সহযোগিতার ব্যাপারেও সম্মতি হয়েছেন। ·পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলিকে চিহ্নিত করে দক্ষতা বিকাশের লক্ষে এক যৌথ কর্মীগোষ্ঠী গঠনের বিষয়েও উভয় পক্ষই সম্মত হয়েছেন। ·২০১৪র ফেব্রুয়ারি মাসে সৌদি সম্রাট সলমন বিন আব্দুল আজিজ আল সউদ-এর ভারত সফরকালে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ক্ষেত্রে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রের পর বিশেষজ্ঞ বিনিময় ও প্রশিক্ষণ প্রদানের পাশাপাশি প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত-সৌদি সহযোগিতায় সাম্প্রতিক অগ্রগতির ব্যাপারেও উভয়পক্ষই সন্তোষ প্রকাশ করেন। ·যোগাযোগ সংক্রান্ত আঞ্চলিক প্রকল্পগুলি সম্পর্কে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে যে, এই প্রকল্পগুলি আন্তর্জাতিক নিয়ম-নীতিকে মান্যতা দিয়ে রূপায়ন করতে হবে যাতে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের দেশগুলির সার্বভৌমত্ব ও ভৌগলিক অখন্ডতা অক্ষুন্ন থাকে। ·উভয়পক্ষই আঞ্চলিক স্হিতিশীলতা এবং প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়েছেন। ২০১৪র মে পরবর্তী সময়ে পাকিস্হানের সঙ্গে মৈত্রীর সম্পর্ক বজায় রাখতে প্রধানমন্ত্রী মোদী ব্যক্তিগত উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন সৌদি যুবরাজ। এ প্রসঙ্গে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছেন যে ভারত ও পাকিস্হানের মধ্যে গঠনমূলক আলাপ-আলোচনার উপযুক্ত পরিবেশ তৈরিতে প্রয়োজনীয় গুরুত্ব দিতে হবে। ·উগ্রপন্হা ও সন্ত্রাসবাদ সমস্ত জাতি ও সমাজের পক্ষে বিপজ্জনক বলে স্বীকার করে নিয়ে উভয়পক্ষই সন্ত্রাসবাদ ও উগ্রপন্হাকে যেকোন জাতি, ধর্ম বা সংস্কৃতির সঙ্গে যুক্ত করার প্রচেষ্টাকে খারিজ করে দিয়েছেন। ·ভারত ও সৌদি দুই পক্ষই রাষ্ট্রীয় নীতির হাতিয়ার হিসাবে সন্ত্রাসের ব্যবহার থেকে বিরত থাকার জন্য সমস্ত দেশের কাছে আবেদন জানিয়েছে। জঙ্গিদের অস্ত্রশস্ত্র সহ ক্ষেপনাস্ত্র ও দ্রোণ সরবরাহ করার থেকে বিরত থাকার জন্য অন্যান্য রাষ্ট্রের প্রতি আবেদন জানানো হয়েছে। ·প্রধানমন্ত্রী ও সৌদি যুবরাজ দুজনেই জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামায় গত ১৪ই ফেব্রুয়ারি ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর ওপর জঙ্গি হামলার কড়া নিন্দা করেছেন। ·ভারত ও সৌদি আরব পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিষয়গুলির পাশাপাশি পশ্চিম এশিয়া ও মধ্যপ্রাচ্যের দেশগুলিতে নিরাপত্তা পরিস্হিতি নিয়ে আলোচনা করেছেন। দু পক্ষের আলোচনায় আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক শান্তি, নিরাপত্তা ও স্হিতিশীলতার মতো বিষয়গুলি গুরুত্ব পেয়েছে। ·প্যালেস্তাইনবাসী মানুষের প্রাপ্য অধিকার সুনিশ্চিত করতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত এবং আরব শান্তি উদ্যোগের ওপর ভিত্তি করে মধ্যপ্রাচ্যে স্হায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কার্যকর ব্যবস্হা গ্রহণের বিষয়ে উভয়পক্ষের তরফেই আশাপ্রকাশ করা হয়েছে। ·সন্ত্রাস দমনে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়াতে এবং গোয়েন্দা তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে পারস্পরিক সুবিধার্থে উভয়পক্ষই জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা পর্যায়ে সুসংহত নিরাপত্তা-আলোচনা শুরুর ব্যাপারে এবং সন্ত্রাস দমনের লক্ষ্যে যৌথ কর্মীগোষ্ঠী গঠনে সম্মত হয়েছে। ·বিপুল সংখ্যক ভারতীয়দের আপ্যায়নে এবং তাদের সার্বিক কল্যাণে সৌদি নেতৃত্বের ভূমিকার জন্য ভারতের পক্ষ থেকে তাদের ধন্যবাদ দেওয়া হয়েছে। ·৩২তম সৌদি জাতীয় ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে ভারতকে সম্মানীয় অতিথি দেশ হিসাবে গণ্য করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সেদেশের নেতৃবৃন্দকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ·ভারত থেকে হজ তীর্থযাত্রীদের কোটা বাড়িয়ে ২ লক্ষ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী সৌদি যুবরাজকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। ·সৌদি আরবের বিভিন্ন সংশোধনাগারে বন্দি ৮৫০ জন ভারতীয় বন্দিকে মুক্তির যে সিদ্ধান্ত সৌদি যুবরাজ নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তারজন্য সৌদি যুবরাজকে ধন্যবাদ দিয়েছেন। ·সৌদি আরবে বসবাসকারী ভারতীয়দের সুবিধার্থে পেমেন্ট ব্যবস্হায় সহযোগিতার সুযোগ-সুবিধা খুঁজে বের করতে উভয়পক্ষই সম্মত হয়েছে। এই ব্যবস্হা চালু হলে হজ ও উমরাহ তীর্থযাত্রীরাও বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। সৌদি আরবে কর্মরত আটকে পড়া ভারতীয় শ্রমিকদের সমস্যাগুলি মানবিকতার দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে সমাধান করার জন্য সৌদি যুবরাজের উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ·রাষ্ট্রসঙ্ঘ, জি-২০ ও বিশ্ববাণিজ্য সংগঠন সহ অন্যান্য বহুপাক্ষিক মঞ্চগুলিতে পারস্পরিক সহযোগিতা বাড়ানোর মাধ্যমে এ ধরনের বহুপাক্ষিক মঞ্চগুলির সংস্কারের ক্ষেত্রে উভয়পক্ষই তাদের অঙ্গিকারের কথা প্রকাশ করেছে। এই প্রেক্ষিতে উভয়পক্ষই রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদ, বিশ্ববাণিজ্য সংগঠন, আন্তর্জাতিক অর্থ প্রতিষ্ঠান সহ আন্তর্জাতিক ফোরামগুলির সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছে। ·বিশ্বব্যাপি জটিল সমস্যাগুলির সমাধানে বহুপাক্ষিক ব্যবস্হাগুলির কার্যকর সংস্কারের গুরুত্বের ওপরেও উভয়পক্ষ জোর দিয়েছেন। দুই পক্ষই রাষ্ট্রসঙ্ঘে সংস্কারের লক্ষ্যে নিরাপত্তা পরিষদের আসু সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। ·ফেরার অর্থনৈতিক অপরাধীদের সমস্যা সমাধানে একযোগে কাজ করার ব্যাপারেও উভয়পক্ষ তাদের অঙ্গিকারের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেছে। কাভারত্তি এবং কন্যাকুমারীরঅধিবাসীদের সঙ্গেও তিনি এদিন দেখা করেন। ঘূর্ণিঝড়েরতাণ্ডবে তাঁদের দুঃখ, কষ্ট ও দুর্দশার একটি সার্বিক চিত্র স্থানীয় অধিবাসীরা তুলেধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। শ্রী মোদী গ্রামবাসীদের আশ্বাস দিয়ে জানান যে, এইসঙ্কটের মুহূর্তে কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের পাশেই রয়েছে এবং প্রয়োজন মতো সকল রকমসাহায্য ও সহায়তা তাঁদের কাছে পৌঁছে দেওয়া হবে। ঘূর্ণিঝড় পরবর্তী পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে কাভারত্তি, কন্যাকুমারী এবংতিরুবনন্তপুরমে পৃথক পৃথক পর্যালোচনা বৈঠকে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী। ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যগুলির জন্য ত্রাণ সহায়তার বিশেষ প্যাকেজের ব্যবস্থা করাহবে বলে এদিন ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, কেরল, তামিলনাডু এবংলাক্ষাদ্বীপকে এজন্য অনতিবিলম্বেই ৩২৫ কোটি টাকার আর্থিক সহায়তার যোগান দেওয়া হবে।এর আগে এ মাসের গোড়ায় তামিলনাডুর অনুকূলে ২৮০ কোটি টাকা এবং কেরলকে ৭৬ কোটি টাকারআর্থিক সহায়তা দেওয়া হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী ঘোষিত ৩২৫ কোটি টাকার আর্থিক প্যাকেজ ঐসহায়তার অতিরিক্ত বলে এদিন সুস্পষ্টভাবে ব্যক্ত করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। স্থির হয়েছে যে, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় বিশেষ অগ্রাধিকারেরভিত্তিতে সম্পূর্ণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ১ হাজার ৪০০টি বাসস্থানের পুনর্নির্মাণের কাজেসাহায্য করবে কেন্দ্রীয় সরকার। এই কর্মসূচির আওতায় নিজেদের একটি করে নতুন বাড়ি গড়েতোলার জন্য প্রত্যেক সুফল গ্রহীতাকে দেওয়া হবে দেড় লক্ষ টাকা। এছাড়াও, ওখিঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের বিমা সংক্রান্ত দাবি-দাওয়ার দ্রুত নিষ্পত্তি করতেনির্দেশ দেওয়া হয়েছে সংশ্লিষ্ট বিমা সংস্থাগুলিকে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী তাঁর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ঘূর্ণিঝড়ে মৃতব্যক্তিদের নিকটাত্মীয়কে ২ লক্ষ টাকা এবং গুরুতরভাবে জখম ব্যক্তিদের প্রত্যেককে ৫০হাজার টাকা করে বিশেষ সহায়তা দেওয়া হবে। এদিনের পর্যালোচনা বৈঠকগুলিতে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয় যে, গত ১২৫ বছরেরমধ্যে ওখি ঘূর্ণিঝড়টি ছিল তৃতীয় বৃহত্তম ঘূর্ণাবার্ত্যা, যা প্রভূত ক্ষতিসাধনকরেছে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলগুলির। আগামীকাল গুয়াহাটিতে ‘অ্যাডভান্টেজ আসাম – বিশ্ব বিনিয়োগ শীর্ষ সম্মেলন২০১৮’র সূচনাপর্বে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অসম সরকারের উদ্যোগে এটিই হ’ল বিনিয়োগ এবং বিনিয়োগ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধাপ্রসারের ক্ষেত্রে এক বৃহত্তম শীর্ষ সম্মেলন। এর লক্ষ্য হ’ল – বিনিয়োগকারীদের কাছেঅসমের ভৌগোলিক তথা প্রকৌশলগত সুযোগ-সুবিধার দিকগুলি তুলে ধরা। দক্ষিণ ওদক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার বিকাশশীল অর্থনীতির দেশগুলিতে রপ্তানি-কেন্দ্রিক এবং পরিষেবা-ভিত্তিকউৎপাদন প্রচেষ্টা এবং এ সম্পর্কিত নানা ধরণের সুযোগ-সুবিধাগুলি ব্যাখ্যা করা হবেবিশ্ব বিনিয়োগকর্তাদের কাছে। অরুণাচল প্রদেশের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী কালিখো পুল-এর প্রয়াণেশোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। একবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “ কালিখো পুলের শোচনীয় মৃত্যুতে তাঁর পরিবার ও সমর্থকদের প্রতি আমারসমবেদনা রইল। রাশিয়া ও ভারতের প্রতিনিধিদলের বিশিষ্ট সদস্যগণ, আমি ভারতের পুরনো বন্ধুরাষ্ট্রপতি পুতিনকে গোয়াতে স্বাগত জানাতে পেরে আনন্দিত| রুশভাষায় একটা প্রবাদ রয়েছে: প্রতিরক্ষা সহযোগিতায় মউ এই মউ-এর উদ্দেশ্য হচ্ছে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে ভারত ও জর্ডানের মধ্যে সহযোগিতার সম্ভাব্য ক্ষেত্রগুলোকে চিহ্নিত করা এবং প্রশিক্ষণ, প্রতিরক্ষা শিল্প, সন্ত্রাসবাদ-বিরোধী পদক্ষেপ, সামরিক শিক্ষা, সাইবার সুরক্ষা, সামরিক চিকিত্সা পরিষেবা, শান্তিরক্ষা ইত্যাদি নির্ধারিত ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে রূপায়িত করার জন্য সমন্বয়কে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া| কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টের ক্ষেত্রে ভিসার প্রয়োজন বাতিল এই চুক্তির ফলে ভারত ও জর্ডানের কূটনৈতিক ও সরকারি পাসপোর্টধারীদের দুই দেশেই আসা-যাওয়া এবং দেশের ভূখণ্ডের মধ্য দিয়ে যাতায়াতের ক্ষেত্রে কোনো ভিসার প্রয়োজন হবেনা| সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি (সি.ই.পি.) ২০১৮ থেকে ২০২২ সালের সময়সীমার মধ্যে কার্যকর এই কর্মসূচির মাধ্যমে ভারত ও জর্ডানের মধ্যে সঙ্গীত ও নৃত্য, থিয়েটার, প্রদর্শনী, সম্মেলন ও বৈঠক, পুরাতত্ত্ব, নথিপত্র, গ্রন্থাগার, জাদুঘর, সাহিত্য, গবেষণা ও দলিল রচনা, বিজ্ঞান জাদুঘর, উত্সব, গণমাধ্যম এবং যুব কর্মসূচির ক্ষেত্রে আদান প্রদানের বিষয় সূচিত হবে| এই মউ-এর মাধ্যমে জর্ডানে ভারতীয় নাগরিকদের চুক্তিবদ্ধ কর্মীদের প্রশাসনে সেরা পদ্ধতিকে উত্সাহিত করার জন্য ভারত ও জর্ডানের মধ্যে সহযোগিতার বিষয়কে সূচিত করা হয়েছে| ভারত ও জর্ডানের মধ্যে স্বাস্থ্য ও ওষুধের ক্ষেত্রে সহযোগিতার মউ রক ফসফেট ও সার/এন.পি.কে.-এর দীর্ঘমেয়াদী সরবরাহের জন্য মউ এই মউ-এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, ভারতে ১০০ শতাংশ নিয়ে আসার জন্য দীর্ঘমেয়াদী চুক্তি সহ ফসফরিক অ্যাসিড, ডি.এ.পি./এন.পি.কে. সারের জন্য জর্ডানে রক ফসফেটের খনন ও উত্পাদন ব্যবস্থার স্থাপন করা| এই মউ ভারতের রক ফসফেটের দীর্ঘমেয়াদী ও অবিচ্ছিন্ন সরবরাহ সুনিশ্চিত করছে| আমদানি-রফতানি শুল্কের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহায়তা চুক্তি এই চুক্তিতে আমদানি-রফতানি শুল্কের সঙ্গে যুক্ত অপরাধকে প্রতিরোধ করা এবং আমদানি-রফতানি শুল্ক, কর, ফি ও অন্যান্য চার্জের সম্পর্কিত শুল্ক প্রশাসন যথোপযুক্ত রূপে কার্যকর সুনিশ্চিত করার জন্য ভারত ও জর্ডানের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতা করার ব্যবস্থা করা হয়েছে| আগ্রা ও পেট্রা ’ র (জর্ডান) মধ্যে দ্বৈত চুক্তি এই চুক্তির মাধ্যমে আগ্রা ও পেট্রার পৌরসভা পর্যটন সংস্কৃতি, খেলাধুলা ও আর্থিক ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার কাজকর্মকে চিহ্নিত করে সামাজিক যোগাযোগকে উত্সাহিত করার জন্য যুগ্মভাবে কাজ করার ঘোষণা দিয়েছে| এই মউ-এর উদ্দেশ্য হচ্ছে, দুটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে যুগ্ম প্রকল্পগুলোর উন্নয়ন করা; শিক্ষামূলক ও বৈজ্ঞানিক কাজকর্মের যুগ্মভাবে আয়োজন করা এবং কর্মী, ছাত্রছাত্রী ও সমান আগ্রহের সামগ্রীর আদান-প্রদান করা| প্রসার ভারতী ও জর্ডান টিভি ’ র মধ্যে মউ এই মউ-এর মাধ্যমে অনুষ্ঠানগুলোর আদান-প্রদান ও সহ-নির্মাণ, কর্মীদের প্রশিক্ষণ এবং আরও সমন্বয়ের জন্য প্রসার ভারতী এবং জর্ডান রেডিও ও টিভি কর্পোরেশনের মধ্যে সহযোগিতা সূচিত হচ্ছে| ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায় সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ডিজেল রেল ইঞ্জিনগুলিকে ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনে রূপান্তরিত করা হয়েছে। ইলেক্ট্রিক ইঞ্জিনে রূপান্তরিত হওয়ার ফলে গ্রিন হাউস গ্যাস নির্গমন কমবে এবং ভারতীয় রেলের কার্যকরিতা বৃদ্ধি পাবে। প্রধানমন্ত্রী সীরগোবর্ধনপুরে শ্রী গুরু রবিদাস জন্মস্থান মন্দিরে গুরু রবিদাস জন্মস্থানে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। শ্রী গুরু রবিদাসের মূর্তিতে তিনি শ্রদ্ধা নিবেদন করবেন। এই উপলক্ষে এক জনসভাতেও তাঁর ভাষণ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে। শ্রী মোদী বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে নবনির্মিত মদন মোহন মালব্য ক্যান্সার সেন্টারের উদ্বোধন করবেন। নবনির্মিত এই ক্যান্সার চিকিৎসা কেন্দ্রে উত্তর প্রদেশ, ঝাড়খন্ড, বিহার, উত্তরাখন্ড ছাড়াও নেপালের মতো প্রতিবেশী দেশের সাধারণ মানুষ সুলভে উন্নত মানের চিকিৎসা পরিষেবা গ্রহণ করতে পারবেন। এরপর, প্রধানমন্ত্রী লেহারতারায় হোমি ভাবা ক্যান্সার হাসপাতালের উদ্বোধন করবেন। এই দুই ক্যান্সার হাসপাতাল চালু হওয়ার ফলে ক্যান্সার সংক্রান্ত চিকিৎসা ও গবেষণা ক্ষেত্রে বারাণসী এক গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হয়ে উঠবে। শ্রী মোদী দেশের প্রথম স্বতন্ত্র প্রযুক্তিসম্পন্ন ভাবাট্রন প্রতিষ্ঠানটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ে তিনি পণ্ডিত মদন মোহন মালব্যর মূর্তি এবং বারাণসী ঘাটে দেওয়াল চিত্রের আবরণ উন্মোচন করবেন। তিনি সেখানে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা – আয়ুষ্মান ভারতের সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এরপর, শ্রী মোদী বারাণসীর আউরে গ্রামে বারাণসী ও পার্শ্ববর্তী এলাকার মানুষের স্বার্থে স্বাস্থ্য ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করবেন। বিভিন্ন প্রকল্পের সুফলভোগীদের হাতে তিনি শংসাপত্র তুলে দেবেন। দিব্যাঙ্গ জনদের বিভিন্ন সহায়ক সাজ-সরঞ্জাম ও উপকরণ প্রদান করবেন। রামনগর ডাকঘরে যাত্রী সংরক্ষন ব্যবস্থারও তিনি উদ্বোধন করেছেন (রিমোটের মাধ্যমে)। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বারাণসী দীর্ঘদিন কাল ধরে ভারতকে জ্ঞানের আলো ( জ্ঞান প্রকাশ) দিয়ে আসছে, এখন ভারতকে আলো দেয়ার প্রতীক হয়ে দাঁড়াল (উর্জা প্রকাশ),আইপিডিএস জাতীয়স্তরে বারাণসী থেকেই সূচনা হল। তিনি বলেন, আজকের অনুষ্ঠানের বিভিন্ন প্রকল্প, যেমন রাস্তা, বিদ্যুৎ, স্বাস্থ্য প্রকল্প – সবগুলোই পূণ্যার্থী এবং ভ্রমণকারীদের সুবিধা এবং উন্নতিকল্পে সুচিত হল। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, বারাণসী পুরোনো আমলের বিদ্যুৎ পরিষেবাকে এই শহরের ঐতিহ্য-র সাথে সাযুয্য রেখে আইপিডিএস-র মাধ্যমে পুরোটাই নতুন করে গড়া হবে। আইপিডিএস-র মাধ্যমে এই বিষয়টি সারা ভারতেই শহরাঞ্চলের জন্য করা হবে। প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের স্বপ্নকে স্বাধীনতার ৭৫ বছরে ২০২২ সালের মধ্যে পূরণ করার প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছেন। তিনি বলেন, ভারত সম্পর্কে তাদের দর্শন পূরণের অন্যতম উপাদান হল, সর্বদা সারা দেশজুড়ে সকলের জন্য বিদ্যুতের ব্যবস্থা করা। এই কাজে তিনি বারাণসীবাসীদের আশীর্বাদ চেয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মহিলা সহ বারাণসীর যুব সম্প্রদায়, তার স্বচ্ছ ভারত-এর আহ্বানে সাড়া দিয়েছেন, এবং তা শহরের ঘাটগুলিতে তা প্রতিফলিত হতে শুরু করেছে। উত্তরপ্রদেশে চলতি শিক্ষামিত্র সমস্যার ব্যাপারে কথা বলতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী তাদের বলেছেন সাহস রাখতে, এবং আদালতের সংশ্লিষ্ট নির্দেশ এসে গেলে, তিনি সাংসদ হিসাবে উত্তরপ্রদেশ সরকারের সাথে বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, সরকারী এবং বেসরকারী ক্ষেত্রের সাথে ছোট এবং মাঝারি উদ্যোগপতি সহ ‘ব্যক্তিগত’ ক্ষেত্রের উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রয়েছে আর্থিক উন্নতি এবং কর্মসংস্থানের ব্যাপারে, এবং সেজন্য তিনি মুদ্রা ব্যাঙ্ক এবং দক্ষতা বিকাশের মত পদক্ষেপের মাধ্যমে এই বিষয়ের উপর নজর দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মনোহর পারিকরের প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “শ্রী মনোহর পারিকর ছিলেন এক অতুলনীয় নেতা। এক প্রকৃত দেশপ্রেমিক ও ব্যতিক্রমী প্রশাসক যিনি সকলের কাছেই প্রশংসা পেতেন। জাতির প্রতি অক্লান্ত সেবার জন্য প্রজন্মের পর প্রজন্ম তাঁকে মনে রাখবে। শ্রী মনোহর পারিকর ছিলেন আধুনিক গোয়ার প্রতিষ্ঠাতা। সিকিউরিটিজঅ্যান্ড এক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি)-র সঙ্গে কুয়েতের ক্যাপিটাল মার্কেট্‌সঅথরিটি (সিএমএ)-এর পারস্পরিক সহযোগিতা ও কারিগরি সহায়তার লক্ষ্যে এক মউ স্বাক্ষরেরপ্রস্তাব বুধবার অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিতকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এইদুটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতা ও সম্পর্ক মউ স্বাক্ষরের ফলে আরওপ্রসার লাভ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। দু’দেশের শেয়ার বাজারের প্রসার ও বিকাশেরউপযোগী পরিস্থিতি গড়ে তুলতেও মউ স্বাক্ষরের ঘটনা বিশেষভাবে সাহায্য করবে। সংসদের বাজেট অধিবেশন আজ শুরু হতে চলেছে। রাষ্ট্রপতিরভাষণের মধ্য দিয়েই সূচনা হবে এই অধিবেশনের। বিগত অধিবেশনে আমরা চেষ্টা করেছিলামএবং এ ব্যাপারে জাতিরও বিশেষ আশা ছিল যে, তিন তালাকের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়নিয়ে কোনও রকম রাজনীতি করা হবে না, যাতে মুসলিম মহিলাদের জন্য তাঁদের যোগ্য অধিকারপ্রতিষ্ঠা করা যায়। নতুন বছরে অর্থাৎ ২০১৮ সালেএটাই হবে মুসলিম নারী সমাজের প্রতি আমাদের শ্রেষ্ঠ উপহার। বাজেট অধিবেশনটি কিন্তু খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, ভারতীয় অর্থনীতি সম্পর্কেসমগ্র বিশ্বই বর্তমানে খুব বেশি রকম আশাবাদী। বাজেট অধিবেশনের এক মাস পরে বাজেটপ্রস্তাবের বিষয়গুলি বিশদভাবে খতিয়ে দেখে এই উদ্দেশ্যে গঠিত বিভিন্ন কমিটি। অতীতঅভিজ্ঞতায় আমরা দেখেছি যে, বাজেট প্রস্তাব পর্যালোচনাকালে জাতীয় স্বার্থকে সর্বদাইরাজনৈতিক স্বার্থের ঊর্ধ্বে রাখা হয়। শাসক দলের সাংসদরা যেমন বাজেট প্রস্তাবেরত্রুটি-বিচ্যুতি সম্পর্কে তাঁদের মতামত তুলে ধরেন, বিরোধী দলের সদস্যরাও তেমনিবাজেট প্রস্তাবগুলির বিশেষ বিশেষ বৈশিষ্ট্যগুলি সকলের নজরে নিয়ে আসেন। এক কথায়আলোচনা ও বিতর্কের এক সুস্থ পরিবেশ গড়ে ওঠে এর মধ্য দিয়ে। গতকালের সর্বদলীয় বৈঠকে আমি জানিয়েছি যে, ঐ সমস্ত কমিটির আলোচনা ও বিতর্ককেসর্বোচ্চ মাত্রায় গুরুত্ব দিয়ে সাধারণ মানুষের কল্যাণে যে সমস্ত প্রস্তাব আগেগ্রহণীয় সেগুলিকে বিশেষভাবে চিহ্নিত করব। এশীয় পরিকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাঙ্ক-এর প্রেসিডেন্ট ভারত এবং বিদেশ থেকে আগত বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ, এশীয় পরিকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাঙ্কের তৃতীয় সাধারণ বৈঠক উপলক্ষে আজ মুম্বাইতে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। এই ব্যাঙ্ক এবং তার সদস্যদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে নিবিড়তর করে তোলার এ ধরণের এক সুযোগলাভের জন্যও আমি আনন্দিত। এআইআইবি-এর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের সূচনা ২০১৬-র জানুয়ারি মাসে। তিন বছরেরও কম সময়ের মধ্যে এর বর্তমান সদস্য সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৮৭। ব্যাঙ্কের প্রতিশ্রুত মূলধনের মাত্রা বর্তমানে ১০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। এশিয়ায় এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালনের লক্ষ্যে এই ব্যাঙ্ক এখন প্রস্তুত। জনসাধারণের জন্য এক উন্নততর ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে তোলার লক্ষ্যে এশিয়ার দেশগুলির মিলিত প্রচেষ্টার ফসল হ’ল এশীয় পরিকাঠামো বিনিয়োগ ব্যাঙ্ক। উন্নয়নশীল দেশ হিসাবে আমাদের সকলকেই প্রায় একই ধরণের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়। এর মধ্যে একটি হ’ল পরিকাঠামো গড়ে তোলার জন্য সহায়সম্পদের চাহিদা পূরণ। একথা জেনে আমি খুবই খুশি যে, এ বছরের বৈঠকের মূল থিম বা আলোচ্য বিষয় হ’ল ‘পরিকাঠামো খাতে বিনিয়োগ : উদ্ভাবন ও সহযোগিতা’। নিরন্তর পরিকাঠামো প্রক্রিয়ার স্বার্থে এআইআইবি-র বিনিয়োগ প্রচেষ্টা কোটি কোটি মানুষের জীবনে সুফল এনে দিতে পারে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিচর্যা, আর্থিক পরিষেবা এবং ব্যবহারিক দিক থেকে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে এশিয়ার দেশগুলিতে এখনও বিভেদ ও বৈষম্য রয়ে গেছে। এআইআইবি-র মতো আঞ্চলিক পর্যায়ের প্রতিষ্ঠানগুলি সহায়সম্পদের প্রসার ও বৃদ্ধিতে এক কেন্দ্রীয় ভূমিকা পালন করতে পারে। নিঃসন্দেহে এ হ’ল এক শুভ সূচনা। এজন্য প্রয়োজন সরল প্রক্রিয়াকরণ এবং দ্রুত অনুমোদন পদ্ধতি। শুধু তাই নয়, এজন্য আবার প্রয়োজন উন্নত মানের প্রকল্প ও কর্মসূচি প্রণয়ন এবং বলিষ্ঠ প্রকল্প গড়ে তোলার প্রস্তাব। ভারত এবং এআইআইবি উভয়েই অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে আরও অন্তর্ভুক্তিমূলক ও নিরন্তর করে তুলতে অঙ্গীকারবদ্ধ বলে আমার বিশ্বাস। এর ফলে, এই ধরণের সম্পদ গড়ে তোলার কাজে পেনশন, বিমা এবং সার্বভৌম সম্পদ তহবিল থেকে প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগের সম্ভাবনাকে অনস্বীকার্য। বিনিয়োগ খাতে এআইআইবি ২০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্রতিশ্রুতি দেওয়ার ফলে এই তহবিলটি এখন আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার মতো অবস্থায় পৌঁছে গেছে। বিশ্বের সর্বাপেক্ষা বিনিয়োগ-বান্ধব অর্থনীতির অন্যতম হ’ল ভারত। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি এবং বৃহদায়তন অর্থনীতির স্থিতিশীলতার দিকে লক্ষ্য রেখেই বিনিয়োগকর্তারা লগ্নিতে আগ্রহী। সেই সঙ্গে, তাঁদের প্রয়োজন রাজনৈতিক স্থিতি এবং সহযোগিতামূলক নিয়ন্ত্রক কাঠামো যাতে তাঁদের বিনিয়োগ সর্বদাই সুরক্ষিত থাকে। বৃহদাকারের কর্মপ্রচেষ্টা এবং অধিকতর মূল্য সংযোজনের দিক থেকে এক বড় ধরণের বিপণন ব্যবস্থা, দক্ষ শ্রমিক এবং বেশ ভালো রকমের ব্যবহারিক পরিকাঠামো বিনিয়োগ কর্তাদের আকৃষ্ট করে। বিশ্ব অর্থনীতিতে একটি উজ্জ্বল বিন্দু রূপে ভারতের আবির্ভাব বিশ্বের অগ্রগতিকেও সঠিক পথে চালিত করেছে। আবার ক্রয় ক্ষমতার দিক থেকে ভারত এখন রয়েছে তৃতীয় বৃহত্তম অবস্থানে। ২০১৭ সালের চতুর্থ ত্রৈমাসিকে আমাদের দেশে বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ৭.৭ শতাংশে। অন্যদিকে, ২০১৮’তে বৃদ্ধির হারকে ৭.৪ শতাংশে ধরে রাখতে পারব বলে আমরা আশাবাদী। তেলের মূল্য বৃদ্ধি সত্ত্বেও মুদ্রাস্ফীতি রয়েছে নিয়ন্ত্রণের মধ্যে। আর্থিক সংহতি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে আমাদের সরকার দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ। দেশের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন অর্থাৎ জিডিপি যেমন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে, সরকারি ঋণের বোঝাও তেমনই হ্রাস পেতে চলেছে। দীর্ঘ অপেক্ষার পর রেটিং-এর দিক থেকেও ভারতের বর্তমান অবস্থান বেশ উঁচুতেই রয়েছে। বিদেশের সঙ্গে আমরা এক বলিষ্ঠ সম্পর্ক গড়ে তুলতে পেরেছি। ৪০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারেরও বেশি বিদেশি মুদ্রার মজুত ভাণ্ডার আমাদের আরও কিছুটা স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে। ভারতীয় অর্থনীতিতে বিশ্বের আস্থা ক্রমশ বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। আঙ্কটাডের বিশ্ব বিনিয়োগ প্রতিবেদন অনুযায়ী প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের একটি গন্তব্য হিসাবে ভারত এখন বিশ্বের শীর্ষ দেশগুলির মধ্যে স্থান করে নিয়েছে। বিদেশি বিনিয়োগ কর্তারা মনে করেন যে, ভারতের রাজনৈতিক অর্থ ব্যবস্থায় ঝুঁকির হার প্রায় নগণ্য। বিনিয়োগ প্রচেষ্টাকে উৎসাহ দিতে সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। বাণিজ্যিক কাজকর্মের স্বার্থে নিয়মনীতিকে আমরা অনেকটাই সরল করে তুলেছি। আবার বিনিয়োগ কর্তাদের জন্য আমরা গড়ে তুলেছি এক দক্ষ, নির্ভরযোগ্য, স্বচ্ছ এবং সহজেই অনুমেয় এক পরিবেশ ও পরিস্থিতি। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিবেশকে আমরা অনেকটাই উদার করে তুলেছি। বর্তমানে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অনুমোদন সম্পর্কিত প্রক্রিয়াকরণের কাজ পরিচালিত হচ্ছে স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে। আমাদের দেশে সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ আরেকটি পদ্ধতিগত সংস্কার প্রচেষ্টা হ’ল পণ্য ও পরিষেবা করের প্রচলন। ‘এক জাতি – অভিন্ন কর’ এই নীতি অনুসরণ করে তা চালু করা হয়েছে। এর ফলে, কর বৃদ্ধির প্রবণতাকে যেমন নিয়ন্ত্রণ করা গেছে, অন্যদিকে তেমনই কাজকর্মে স্বচ্ছতাও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের এই সমস্ত পরিবর্তন লক্ষ্য করেছে বিশ্বের অন্যান্য দেশগুলিও। বাণিজ্যিক কাজকর্ম সহজতর করে তোলার প্রসঙ্গে বিশ্ব ব্যাঙ্কের ২০১৮ সালের প্রতিবেদন অনুযায়ী ৪২টি স্থান অতিক্রম করে ভারতের অবস্থান এখন শীর্ষস্থানীয় ১০০টি দেশের মধ্যে। ভারতীয় বাজারের আকার ও আয়তন যথেষ্ট সম্ভাবনাপূর্ণ। ভারতে মাথাপিছু আয় গত ১০ বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে দ্বিগুণ। মধ্যবিত্ত ক্রেতা সাধারণের সংখ্যাও বর্তমানে ৩০ কোটিরও বেশি। এই সংখ্যা আগামী ১০ বছরে আরও দ্বিগুণ হয়ে যাবে বলে আশা করা হচ্ছে। ভারতের চাহিদা ও প্রয়োজন বর্তমানে এতটাই বিশাল যে বিনিয়োগ কর্তারা এদেশের অর্থনীতির অতিরিক্ত সুযোগ-সুবিধাগুলি কাজে লাগাতে পারবেন। যেমন – ভারতে বাসস্থান নির্মাণ কর্মসূচির লক্ষ্যমাত্রা হ’ল দেশের শহরাঞ্চলগুলিতে ১ কোটি বাসস্থান নির্মাণ করা। বেশ কয়েকটি দেশের এ সম্পর্কিত চাহিদাগুলিকে যোগ করলেও তা ভারতের চাহিদার সঙ্গে কোনওভাবেই তুলনীয় নয়। সুতরাং, ভারতে বিনিয়োগে আগ্রহী হলে বাসস্থান নির্মাণের ক্ষেত্রে নতুন নতুন প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার অনেকগুলি সুযোগ-সুবিধাই এনে দিতে পারে। এক্ষেত্রে আরেকটি উদাহরণ হ’ল ভারতের পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি কর্মসূচি। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ১৭৫ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আমরা স্থির করেছি। এর মধ্যে সৌর জ্বালানি উৎপাদনের পরিমাণ দাঁড়াবে ১০০ গিগাওয়াট। এই লক্ষ্যমাত্রা অতিক্রম করার জন্যও আমরা সচেষ্ট রয়েছি। ২০১৭ সালে আমরা প্রচলিত এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি শক্তির মাত্রা বৃদ্ধি করেছি। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা গঠনের মধ্য দিয়ে সৌরশক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যে মিলিত প্রচেষ্টার ওপর আমরা জোর দিয়েছি। এই মঞ্চ প্রতিষ্ঠার প্রথম সম্মেলনটি অনুষ্ঠিত হয় এ বছর নয়াদিল্লিতে। ১ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পরিমাণ অর্থ বিনিয়োগের মাধ্যমে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে ১ হাজার গিগাওয়াট সৌর জ্বালানি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে এই মঞ্চটিতে। বৈদ্যুতিন পদ্ধতি ও প্রচেষ্টার ওপর আমরা এখন কাজ করে চলেছি। আমাদের কাছে এখন চ্যালেঞ্জ হ’ল প্রযুক্তির এক মজুত ভাণ্ডার গড়ে তোলা। এ সম্পর্কিত একটি সম্মেলনও আমরা আহ্বান করেছি এ বছর। এই প্রচেষ্টা আমাদের আরও এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে বলে আমি আশাবাদী। ভারতের সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আমরা সর্বস্তরে আরও উন্নত করে তুলছি। জাতীয় করিডর ও মহাসড়ক নির্মাণের মাধ্যমে সড়ক সংযোগকে আরও উন্নত করে তুলতে রূপায়িত হচ্ছে ভারতমালা কর্মসূচি। অন্যদিকে, বন্দরগুলির সঙ্গে যোগাযোগ, বন্দর আধুনিকীকরণ এবং বন্দর-ভিত্তিক শিল্প প্রচেষ্টার কাজকে উৎসাহ দিতে আমরা গ্রহণ করেছি সাগরমালা প্রকল্পটিকে। দেশের রেল নেটওয়ার্ককে জটমুক্ত করতে নির্মিত হচ্ছে ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডর। অন্তর্দেশীয় জল পরিবহণের মাধ্যমে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজের সুবিধার জন্য জাতীয় জলপথগুলির পরিবহণ ক্ষমতা বৃদ্ধি করতে রূপায়িত হচ্ছে জল মার্গ বিকাশ প্রকল্প। আকাশপথে যোগাযোগকে আরও সহজ ও উন্নত করে তুলতে এবং আঞ্চলিক বিমানবন্দরগুলিকে উন্নত করে তোলার লক্ষ্যে আমরা চালু করেছি উড়ান কর্মসূচিও। পরিকাঠামো সম্পর্কে প্রচলিত ধ্যানধারণার পাশাপাশি আধুনিক যুগের উপযোগী কিছু কিছু পরিকাঠামো সম্পর্কেও কাজ শুরু হয়ে গেছে আমাদের দেশে। ভারতনেট-এর মাধ্যমে দেশের সর্বশেষ প্রান্তটিকেও যুক্ত করা হবে ইন্টারনেট ব্যবস্থার সঙ্গে। ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের বিষয়টিকেও আমরা উৎসাহিত করছি। ভীম অ্যাপ এবং রুপে কার্ডের সঙ্গে আমাদের ইউনাইটেড পেমেন্টস্‌ ইন্টারফেস সিস্টেম অর্থাৎ ইউপিআই ডিজিটাল অর্থনীতির প্রকৃত সম্ভাবনার সফল প্রয়োগকে কাজে লাগিয়েছে। অন্যদিকে, উমঙ্গ অ্যাপ এবং মোবাইল ফোন ব্যবহার করে ১০০টি সরকারি পরিষেবা লাভের সুযোগ গ্রহণ করছেন দেশের নাগরিকরা। দেশের গ্রাম ও শহরাঞ্চলের মধ্যে ডিজিটাল প্রযুক্তির ক্ষেত্রে যে ফাঁক বা ব্যবধান রয়ে গেছে, তা পূরণ করাই হ’ল আমাদের ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশনের লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। কৃষি হ’ল ভারতীয় অর্থনীতির এক জীবনরেখা। তাই, গুদামঘর ও কোল্ডচেন গড়ে তোলা, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও শস্য বিমার মতো প্রচেষ্টা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য কাজকর্মের ক্ষেত্রেও আমরা এখন বিনিয়োগের প্রসার ঘটিয়ে চলেছি। জলের সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করার সাথে সাথে উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমরা এখন উৎসাহিত করছি অতিক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থাগুলিকেও। সম্ভাবনাময় এই ক্ষেত্রগুলিতে বিনিয়োগের সুযোগ গ্রহণ করে আমাদের সঙ্গে সহযোগিতাবদ্ধ হওয়ার জন্য আমি আহ্বান জানাই এআইআইবি-কে। শৌচাগার, জল এবং বিদ্যুতের সুযোগ-সুবিধা সহ একটি করে বাসস্থানের সুযোগ আমরা পৌঁছে দিতে চাই দেশের প্রত্যেকটি দরিদ্র ও নিরাশ্রয় পরিবারে। বর্জ্য ব্যবস্থাপনাকে সফল করে তুলতেও বিভিন্ন কৌশল অবলম্বনের আমরা পক্ষপাতী। সম্প্রতি আমাদের জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা মিশন আয়ুষ্মান ভারতের সূচনা হয়েছে। দেশের ১০০ মিলিয়ন দরিদ্র ও অসহায় পরিবারগুলির কাছে বছরে ৭ হাজার ডলারের চিকিৎসা সহযোগিতার সুযোগ পৌঁছে দেবে এই প্রকল্পটি। স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগ প্রসারের পাশাপাশি এই ক্ষেত্রটিতে কর্মসংস্থানের সুযোগও সৃষ্টি হবে প্রচুর। এই প্রচেষ্টার পথ ধরে উন্নতমানের ওষুধ ও সংশ্লিষ্ট ব্যবহার্য এবং চিকিৎসা প্রযুক্তির সাজসরঞ্জাম উৎপাদনও প্রসার লাভ করবে। কল সেন্টার, গবেষণা, মূল্যায়ন এবং তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ সম্পর্কিত কর্মপ্রচেষ্টা সহ বিভিন্ন সহায়ক কাজকর্মেও কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে। এর ফলে, সার্বিকভাবে উৎসাহ লাভ করবে স্বাস্থ্য পরিচর্যা শিল্পটিও। শুধু তাই নয়, স্বাস্থ্য পরিচর্যার দায়িত্ব সরকার বহন করার ফলে একটি পরিবারের আর্থিক সাশ্রয় বা সঞ্চয়কে অন্যান্য প্রয়োজন ও বিনিয়োগের কাজে লাগানো যাবে। একটি দরিদ্র পরিবারের কাছে ব্যয় করার মতো অতিরিক্ত আয়ের সুযোগ পৌঁছে যাওয়ার ফলে দেশের অর্থনীতিতে চাহিদাও উত্তরোত্তর-ও বৃদ্ধি পেতে থাকবে। বিনিয়োগকারীদের কাছে এর সুযোগ ও সম্ভাবনা কিন্তু কোনও দিক থেকেই কম কিছু নয়। ভারতীয় অর্থনীতির এই পুনরুত্থানের কাহিনী এশিয়ার অন্যান্য প্রান্তেও আজ পৌঁছে গেছে। তাই, বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের এক বিশেষ মধ্যভাগে বর্তমানে অবস্থান করছে সমগ্র এশিয়া মহাদেশ। সত্যি কথা বলতে কি, তা হয়ে উঠেছে বিশ্ব অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। ‘এশিয়ার শতক’ বলে প্রায়শই যা উচ্চারিত হয়, বস্তুতপক্ষে তার মধ্যেই এখন বাস করছি আমরা। অভ্যুদয় ঘটতে চলেছে এক ‘নতুন ভারত’-এর। এই ভারত দাঁড়িয়ে রয়েছে সকলের জন্য অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধা, জ্ঞান-নির্ভর অর্থনীতি, সার্বিক বিকাশ প্রচেষ্টা এবং ভবিষ্যতের এক দৃঢ় ডিজিটাল পরিকাঠামোর স্তম্ভের ওপর। এআইআইবি সহ আমাদের সবকটি উন্নয়ন সহযোগীর সঙ্গে নিরন্তর কর্মপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমরা উন্মুখ হয়ে রয়েছি। যে সমস্ত সংস্থা বাপ্রতিষ্ঠানে ১০ বা তার বেশি সংখ্যক কর্মী রয়েছেন, সেখানেই এই আইনটি প্রযোজ্য। বিলটি সংশোধনের ফলে সংগঠিত ক্ষেত্রের ১০ লক্ষ ৮০ হাজারের মতো মহিলা কর্মী বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। শুধুমাত্র দুটিজীবিত সন্তানের ক্ষেত্রেই এই ২৬ সপ্তাহের ছুটি প্রযোজ্য হবে। দুটির বেশি সন্তান থাকলে মাতৃত্বকালীন ছুটি দেওয়া হবে ১২ সপ্তাহের জন্য। সংশোধন প্রস্তাবে আরও বলা হয়েছে যে বাড়িতে থেকেই মাতৃত্বকালীন সুযোগ-সুবিধাগ্রহণকারী মায়েরা প্রয়োজনে অফিসের কাজও করতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি ইউএস ওপেন মিক্সড ডাবলস টেনিসের খেতাব বিজয়ে লিয়েন্ডার পেজ এবং মার্টিনা হিঙ্গিসকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এক বার্তায় বলেন, “লিয়েন্ডার পেজ এবং মার্টিনা হিঙ্গিস আবারো ভাল খেললেন। দুর্দান্ত এই জয়ে তাঁদেরকে অভিনন্দন। আমরা সকলে ভীষন আনন্দিত।” কলেজটির নির্মাণ খাতে ব্যয় কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের জন্য যে বাজেট বরাদ্দ করা হয় তার মধ্য থেকেই খরচ করা হবে। মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের ফলে চিকিৎসকদের সংখ্যা যেমন বাড়বে, তেমনই চিকিৎসকের ঘাটতিও মিটবে। কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ছাত্রছাত্রীদের চিকিৎসা-শিক্ষা নিয়ে পড়াশোনার সুযোগ-সুবিধা বৃদ্ধি পাবে। মাননীয় প্রেসিডেন্ট হল্যান্ড এবং শিল্প জগতের নেতৃস্থানীয় ব্যক্তিবর্গ, প্রতি পদক্ষেপে তাঁর সমর্থনের মাধ্যমে এবং এই সমঝোতার ক্ষেত্রে সহ-সভাপতির পদ অলঙ্কৃত করে তিনি আমাকে গভীর কৃতজ্ঞতায় আপ্লুত করে তুলেছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগৃহীত উদ্ধৃতি সংকলন করে প্রকৃতির ওপর একটি গ্রন্থ প্রকাশের উদ্যোগে তিনি ইতিবাচক সাড়া দিয়েছেন। তাঁর সঙ্গে মিলিতভাবে আমি এই গ্রন্থের প্রস্তাবনা রচনা করেছি। সুপ্রাচীন কাল থেকেই বিভিন্ন সভ্যতার আমলে সূর্য বরাবরই এক বিশেষ স্থান অধিকার করে এসেছে। ভারতীয় ঐতিহ্য অনুযায়ী, সকল রকম শক্তির উৎসই হল সূর্য। ঋগ্বেদের বয়ান অনুযায়ী, সূর্য দেবতা পৃথিবীর সমস্ত প্রাণী ও জড় পদার্থের আত্মা-স্বরূপ। ভারতের বহু মানুষ সূর্য প্রণামের মধ্য দিয়ে শুরু করেন তাঁদের দৈনন্দিন কাজকর্ম। বর্তমানে এই শিল্পায়নের যুগে যখন জ্বালানির উৎস ও কলকারখানার বর্জ্য আমাদের এই গ্রহকে বিপদের মুখে ঠেলে দিয়েছে, তখন ভবিষ্যৎ-এর জ্বালানির খোঁজে আমাদের আশ্রয় নিতে হবে সূর্যেরই। উন্নয়নশীল বিশ্বে কোটি কোটি মানুষ যখন সমৃদ্ধির মুখ দেখছে, তখন এক নিরন্তর ও স্থায়ী বিশ্ব পরিবেশ গড়ে তুলতে দুঃসাহসিক প্রচেষ্টা চালাতে হবে আমাদের। এর অর্থ হল, উন্নত দেশগুলিকে এমনভাবে কার্বন নির্গমনের কাজ করে যেতে হবে, যাতে উন্নয়নশীল দেশগুলির বিকাশ কোনওভাবেই না ব্যহত হয়। জলবায়ুর প্রতি স্বাভাবিক ও প্রাকৃতিক ন্যায়-বিচার সম্ভব হয়ে উঠবে একমাত্র তখনই। অন্যভাবে বলতে গেলে পৃথিবীর উন্নতির পথকে সুগম করে তুলতে হবে এমনভাবে, যাতে কার্বন নির্গত হয় খুবই সামান্য মাত্রায়। মনে রাখতে হবে, অর্থনীতি, পরিবেশ ও জ্বালানি শক্তির মধ্যে সমন্বয়সাধনের মধ্য দিয়েই গড়ে উঠবে আমাদের ভবিষ্যৎ। উদার সূর্যালোকে সারা বছরই আশীর্বাদ ধন্য পৃথিবীর কোটি কোটি মানুষ। আবার এর মধ্যেই বাস করেন এমন অনেক মানুষ যাঁরা জ্বালানির উৎস থেকে আজও পুরোপুরি বঞ্চিত। আর ঠিক এই কারণেই প্রয়োজন আমাদের এই সহযোগিতা তথা সমঝোতার বাতাবরণ গড়ে তোলা। গবেষণা ও উদ্ভাবনের কাজে সহযোগিতার দিকে আমাদের নজর দিতে হবে। জ্ঞান ও ব্যবহারিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের কাজও চালিয়ে যেতে হবে সমানভাবে। প্রশিক্ষণ এবং এ সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার কাজেও সহযোগিতার প্রসার প্রয়োজন। বিধিনিয়ম সংক্রান্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে আলোচনার মধ্য দিয়ে একটি সাধারণ গুণমান স্থির করতে হবে আমাদেরই। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি সম্পর্কে বিশ্বের বিভিন্ন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায় সামিল হওয়ার দায়িত্ব রয়েছে আমাদের। সৌর জ্বালানি ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই এক বিপ্লব সূচিত হয়েছে। এ সম্পর্কিত নতুন নতুন প্রযুক্তির উদ্ভাবন হচ্ছে, ব্যয়ের মাত্রাও কমে আসছে এবং গ্রিডের সঙ্গে এই জ্বালানি শক্তি যুক্ত করার কাজেও উন্নতি লক্ষ্য করা গেছে। এই সমস্ত কিছুর মধ্য দিয়েই সকলের জন্য বিশুদ্ধ জ্বালানির স্বপ্ন ক্রমশ বাস্তবায়িত হয়ে উঠছে। আগামী বছরের শেষে আরও ১২ গিগাওয়াট সৌরবিদ্যুৎ যোগ করতে পারবো বলে আমরা আশাবাদী। এই কাজে শিল্প মহলের কাছ থেকে আমরা সাড়া পেয়েছি আশাতীতভাবে। আমাদের জাতীয় সৌর জ্বালানি সংস্থা্র পরিসরে এই উদ্যোগ তথা প্রচেষ্টাকে আমরা সানন্দে স্বাগত জানাবো। সংশ্লিষ্ট মউটি নিয়ন্ত্রক কাজকর্মের দক্ষতা বৃদ্ধির প্রচেষ্টার মাধ্যমে দু’দেশের মধ্যে সমঝোতার এক বিশেষ বাতাবরণ গড়ে তুলতে সাহায্য করবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতের ওষুধ ও চিকিৎসার সাজ-সরঞ্জাম রপ্তানির বিষয়টিও এর ফলে বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে। এছাড়াও, সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রটিতে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা ও তথ্য বিনিময়ের এক বিশেষ পরিবেশ ও পরিস্থিতিরও সৃষ্টি হবে। জনসাধারণের এক সেবক হিসাবে স্মরণীয় হয়ে থাকবেন অনিল মাধব দাভেজি। পরিবেশসংরক্ষণের বিষয়ে তাঁর উৎসাহ ও আগ্রহ ছিল অসম্ভব রকমের। গতকাল সন্ধ্যা পর্যন্ত নীতি সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয়ে আমার কথাবার্তা হয়েছেঅনিল মাধব দাভেজির সঙ্গে। জাতীয় জৈব জ্বালানি নীতি, ২০১৮ অনুমোদন লাভ করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার। ২০১৭-১৮ অর্থবর্ষে দূষণের মাত্রা ৩০ লক্ষ টন কম হবে বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান। সমীক্ষায় প্রকাশ যে ডিপ ফ্রাইং-এর কাজে রান্নার তেল যদি ক্রমাগত পুনর্ব্যবহার করা হয়, তাহলে তা ব্যাপক স্বাস্থ্যহানি এবং নানা ধরণের অসুখ-বিসুখের কারণ হয়ে দাঁড়ায়। ব্যবহৃত রান্নার তেল জৈব জ্বালানি উৎপাদনের ক্ষেত্রে একটি বিশেষ উপাদান বলে চিহ্নিত হয়েছে। খাদ্যসামগ্রী তৈরির কাজে ব্যবহৃত রান্নার তেলের পুনর্ব্যবহার বন্ধ করে তা যদি জৈব জ্বালানি উৎপাদনের কাজে ব্যবহৃত হয়, তাহলে তা স্বাস্থ্যের পক্ষে মঙ্গলজনক। সমীক্ষায় আরও জানা গেছে যে ভারতের শহরাঞ্চলগুলিতে প্রতি বছর গড়ে ৬২ এমএমটি-র মতো কঠিন বর্জ্য পাওয়া যায়। এইউপলক্ষে প্রদত্ত এক ভাষণে তিনি বলেন, মহাত্মা গান্ধী এবং প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রীলাল বাহাদুর শাস্ত্রীর জন্মবার্ষিকীর দিনটি এই ধরণের একটি অনুষ্ঠান আয়োজনের যথার্থমুহূর্ত। প্রধানমন্ত্রীবলেন, প্রবাসী ভারতীয়দের শুধুমাত্র সংখ্যার দিক দিয়ে বিচার করলে চলবে না, তাঁদেরশক্তি ও ক্ষমতার কথাও আমাদের মনে রাখতে হবে। বহু বছর ধরেই ‘মগজ চালান’ কথাটিপ্রচলিত আছে। কিন্তু, প্রবাসী ভারতীয়দের যদি আমরা আমাদের অন্যতম শক্তি হিসেবেবিবেচনা করি, তা হলে ‘মগজ চালান’ কথাটিকে আমরা ‘মগজ লাভ’-এ রূপান্তরিত করতে পারি। শ্রীমোদী বলেন, ভারত কখনও অন্য কোনও দেশকে আক্রমণ করেনি। দুই বিশ্ব যুদ্ধকালে বিদেশেররাষ্ট্রগুলিকে রক্ষা করার কাজে ভারতীয় সেনাদের আত্মোৎসর্গের কথা স্মরণ করিয়ে দিয়েতিনি বলেন, বিশ্বের উচিৎ এই আত্মোৎসর্গকে স্বীকৃতি দেওয়া। এইউপলক্ষে আয়োজিত ‘গান্ধী – এক প্রবাসী’ শীর্ষক একটি প্রদর্শনীও পরিদর্শন করেনপ্রধানমন্ত্রী। মহিলাদের নেতৃত্বে উন্নয়ন প্রক্রিয়ার প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। নিজের নিজের এলাকায় কাজকর্ম করার সময়ে প্রযুক্তি গ্রহণ করতে মহিলা বিধায়কদের উদ্বুদ্ধ করেন প্রধানমন্ত্রী। সকল বিম্‌স্টেকরাষ্ট্রকে জানাই আমার অভিনন্দন। আঞ্চলিকসহযোগিতা প্রসারের ক্ষেত্রে বিম্‌স্টেক হল এক স্বাভাবিক মঞ্চ বিশেষ। ভারত ও মিশরের মধ্যে সমুদ্রপথে পরিবহণ নিয়ে চুক্তি সম্পাদন করতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরোহিত্যে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠক আজ এব্যাপারে অনুমোদন দিয়েছে | উভয় দেশের মধ্যে জাহাজ পরিবহন ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা পাওয়া গেলে উভয় দেশই সুবিধা পাবে বলে বৈঠকে স্বীকার করা হয়েছে | উভয় দেশের মধ্যে এক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্রকে মজবুত করার লক্ষ্যে, পারস্পরিক সহযোগিতাকে দীর্ঘস্থায়ী রূপ দেওয়া এবং বানিজ্যিক ভাবে জাহাজ পরিবহণ সহ অন্যান্য সামুদ্রিক ক্ষেত্র বিষয়ে পরামর্শদানের লক্ষ্যে এই চুক্তি স্বাক্ষরের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়েছে | উভয় পক্ষের জন্য সুবিধাজনক স্থান ও তারিখে এই চুক্তি স্বাক্ষর করা হবে | প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী ভিডিও কনফারেন্সিং এর মাধ্যমে শহরে গ্যাস বন্টন প্রকল্পের নবম পর্যায়ের শিলান্যাস করেছেন। নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবন থেকে তিনিশহরে গ্যাস বন্টন ব্যবস্থার দশম নিলাম প্রক্রিয়ারও সূচনা করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নবম পর্যায়ে, ১২৯টি জেলার শহর এলাকায় গ্যাস বন্টন নেটওয়ার্ক চালু করা হয়েছে। পরিচ্ছন্ন শক্তি ক্ষেত্রে গ্যাস নির্ভর অর্থনীতির ভূমিকা বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিচ্ছন্ন শক্তি ক্ষেত্রের বিষয়ে সামগ্রিক সমাধানে সি জি ডি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। কেন্দ্রীয় সরকার পরিচ্ছন্ন শক্তি ক্ষেত্রের বিস্তার লাভের জন্য কাজ করছে। এই প্রসংগে তিনি সরকার গৃহীত ইথানল ব্লেন্ডিং বায়ো গ্যাস কারখানার মত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন। এর আগে, ভারত ও সুইজারল্যান্ডের মধ্যে বহুধা বিস্তৃত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের খুঁটিনাটি বিষয়গুলি নিয়ে সুইস প্রেসিডেন্ট স্নেডার-আম্মান – এর সঙ্গে এক পর্যালোচনায় মিলিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। পর্যালোচনাকালে বাণিজ্য, প্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি সহ বিভিন্ন বিষয়ের অবতারণা করা হয়। দুটি দেশের সাধারণ অঙ্গীকার, মূল্যবোধ, মানুষে-মানুষে সংযোগ ও অর্থনৈতিক সম্পর্কের মতো বিষয়গুলি ভারত ও সুইজারল্যান্ডের পারস্পরিক সমঝোতাতে যে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে, সে সম্পর্কে একমত হন দুই নেতাই। নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি প্রাক্তনপ্রধানমন্ত্রী ডক্টর মনমোহন সিং-এর জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করলেন| কর্ণাটকের বেশ কিছু অংশ বন্যা কবলিত হয়ে পড়ায় উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ে ঐ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী স্রী এইচ ডি কুমারস্বামীর সঙ্গে কথা বললেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী জানিয়েছেন, তিনি কর্ণাটকের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে ঐ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী কুমারস্বামীর সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করেছেন। পাশাপাশি, শ্রী মোদী ঐ রাজ্যকে সমস্ত ধরণের ত্রাণ সাহায্যেরও আশ্বাস দিয়েছেন। এইম্‌স-এর সংস্থা এবং পরিচালন কর্তৃপক্ষের সচিবহিসেবেও কাজ করবেন নিযুক্ত অধিকর্তা। নতুনতিনটি এইম্‌স-এর জন্য অধিকর্তার পদগুলি অনতিবিলম্বেই পূরণ করা হবে বলে সিদ্ধান্তনেওয়া হয়েছে। নতুন দিল্লীতে আজ (১৮ অক্টোবর, ২০১৮) জাতীয় বিপর্যয় পরিচালন কর্তৃপক্ষের (এনডিএমএ) ষষ্ঠ বৈঠকে পৌরহিত্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশে বিপর্যয়জনিত পরিস্থিতির মোকাবিলায় এনডিএমএ-র বিভিন্ন কার্যকলাপ প্রধানমন্ত্রী পর্যালোচনা করেন। এনডিএমএ-র বিভিন্ন চলতি প্রকল্পও তিনি খতিয়ে দেখেন। জীবন ও সম্পত্তি রক্ষায় দুর্যোগজনিত পরিস্থিতির মোকাবিলার কাজে যুক্ত অন্যান্য সংস্থার সঙ্গে এনডিএমএ-র সমন্বয়ের ভিত্তিতে কাজ করার ওপর তিনি জোর দেন। বিভিন্ন স্থানে বিপর্যয় পরিচালন ব্যবস্থায় আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনা কাজে লাগানোর কথাও তিনি বলেন। সূচনাতেই আমি ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থাকে অভিনন্দনজানাই চ্যালেঞ্জপূর্ণ উপগ্রহ উৎক্ষেপণের আরেকটি ঘটনাকে সফল করে তোলার জন্য। একটিমাত্র পিএসএলভি যানের সাহায্যেদুটি পৃথক কক্ষপথেউৎক্ষেপণ করা হয়েছে আটটি উপগ্রহকে। সিএসআইআর-এর ৭৫তম প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে আয়োজিতপ্ল্যাটিনাম জয়ন্তী অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করার সুযোগ পেয়েছি আমি। প্রত্যেক ভারতবাসীর পক্ষেই খুব গর্বের বিষয় যে আধুনিকভারতের বিকাশে অঙ্গীকারবদ্ধ সিএসআইআর-এর ৭৫তম বছরটি আজ পালিত হচ্ছে। জাতির সেবায় নিয়োজিত এই সংস্থা তার দীর্ঘদিনের যাত্রাপথে । গবেষণা ও উন্নয়নের লক্ষ্যে সার্বিকভাবে নিয়োজিত সিএসআইআর-এরমধ্যে প্রতিফলিত হয়েছে ভারতের বহু বৈচিত্র্যের মিলনের মূল সুরটি। কৃষি থেকে মহাকাশ, জৈব সংবেদন থেকে জৈব ওষুধ, রসায়ন থেকেজলবায়ু পরিবর্তন, ওষুধ উৎপাদন থেকে গভীর সমুদ্রে অনুসন্ধান, ভু-বিজ্ঞান থেকেজ্বালানি শক্তি, খাদ্য থেকে সুগন্ধি, আবাসন থেকে স্বাস্থ্য পরিচর্যা, যন্ত্রপাতিথেকে তথ্যপ্রযুক্তি, চর্মশিল্প থেকে হালকা যুদ্ধবিমান, ক্ষুদ্র অনুসন্ধান থেকে খনিজপদার্থ, অপটিক্স থেকে অপটিক্যাল ফাইবার, পিগমেন্ট্‌স থেকে বৈদ্যুতিন, সড়ক থেকেরোবোটিক্স, সেন্সর থেকে সৌর জ্বালানি, ট্র্যাক্টর থেকে পরিবহণ, ইউএভি থেকে জলযান,জল থেকে আবহাওয়ার পূর্বাভাস – সর্বত্রই রয়েছে সিএসআইআর-এর উজ্জ্বল উপস্থিতি। দেশের ট্র্যাক্টর ‘স্বরাজ’, শিশু দুগ্ধ খাদ্য, দেশেরপ্রথম সুপার কম্পিউটার – এ সমস্ত কিছুই হল সিএসআইআর-এর সাফল্যের কয়েকটি মাত্রউদাহরণ। আজ এই অনুষ্ঠানের মঞ্চে উপস্থিত হওয়ার আগে একটিপ্রদর্শনীতে আমি প্রত্যক্ষ করেছি সিএসআইআর-এর সাফল্যের বেশ কিছু ঘটনা। আমি চাই এইপ্রদর্শনীটিকে নিয়ে যাওয়া হোক দেশের বিভিন্ন প্রান্তে যাতে সেখানকার মানুষও জানতেও বুঝতে পারেন সিএসআইআর-এর কাজকর্মের সাফল্য সম্পর্কে। সিএসআইআর-কে আধুনিক প্রযুক্তি এবং উদ্ভূত চ্যালেঞ্জেরউপযোগী করে গড়ে তোলার জন্য সচেষ্ট হতে হবে আমাদের। আমি মনে করি সিএসআইআর-এর উচিত বাণিজ্যিক কাজকর্ম সহজতরকরে তোলার লক্ষ্যে এক প্রযুক্তিগত মঞ্চ গড়ে তোলা যার মধ্যে সংশ্লিষ্ট বিভিন্নপক্ষকে যুক্ত করে প্রযুক্তির সুফল পৌঁছে দেওয়া যায় সাধারণের কাছে। সিএসআইআর সম্প্রতি মধুমেহ রোগীদের জন্য দেশের প্রথমআয়ুর্বেদিক ওষুধউদ্ভাবন করেছে। এই ওষুধটির শক্তি ও সম্ভাবনা সম্পর্কে আপনারা সকলেইইতিমধ্যেই অবগত। এখন আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিত এই ওষুধটির সুফল সম্পর্কে সাধারণমানুষকে সচেতন করে তোলা যাতে তাঁরা এই ওষুধটি সঠিকভাবে কাজে লাগাতে পারেন। তিনি ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলির প্রেসিডেন্ট শ্রীমতী ভেরোনিকা ম্যাকামোর সঙ্গেও মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী মালুয়ানায় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি পার্কে উদ্ভাবন ও প্রযুক্তিগত বিকাশ কেন্দ্রটিও পরিদর্শন করেন। এই কেন্দ্র তথ্য ও প্রযুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট নানা ক্ষেত্রে শ্রেণীকক্ষে পঠন-পাঠন সহ নানা পরিষেবা ও সহায়তা যোগায় এবং কারিগরিমূলক স্টার্ট আপ প্রকল্পগুলির জন্য প্রস্তুতিপর্বের যাবতীয় ব্যবস্থা করে। তিনি সেখানে ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় মেতে ওঠেন এবং ঐ কেন্দ্রে কাজের ক্ষেত্রে তাঁদের অভিজ্ঞতার শরিক হতে ছাত্রছাত্রীদের উৎসাহ দেন। প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির প্রাক্তনীদের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। মাপুতোয় ভারতীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে আলাপচারিতায় শ্রী মোদী বলেন, আফ্রিকা হল এমন এক মহাদেশ, যেটি প্রথম সেখানে বসবাসকারী ভারতীয়দের পরিচয় ও পরিচিতিকে নির্দিষ্ট আকার দেয়। ৫০০ ও ১০০০টাকার নোট বাতিলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে জনসাধারণের কাছ থেকে মতামত জানতে চেয়েছেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীরনরেন্দ্র মোদী অ্যাপ-এ গিয়ে এক সমীক্ষায় প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমে নাগরিকরা তাঁদেরমতামত পেশ করতে পারেন। ঐ অ্যাপ-এ ১০টি প্রশ্ন রয়েছে, যার উত্তর দিতে হবে নাগরিকদের।আজ এক ট্যুইট বার্তায় সাধারণ মানুষকে এই সিদ্ধান্ত সম্পর্কে সরাসরি তাঁদের মতামতজানাতে অনুরোধ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ঐ সমীক্ষায় যে১০টি প্রশ্নের উত্তর আহ্বান করা হয়েছে, সেগুলি হল :- 1. আপনারা কি মনে করেন যে, ভারতে কালো টাকার অস্তিত্ব রয়েছে? 2. আপনারা কি মনে করেন যে, যে দুর্নীতি ও কালো টাকারবিরুদ্ধে অভিযান চালিয়ে তা সম্পূর্ণ দূর করা উচিৎ? 3. কালো টাকার বিরুদ্ধে সরকারি এই অভিযান সম্পর্কেসার্বিকভাবে আপনাদের মতামত কি? 4. দুর্নীতির বিরুদ্ধে মোদী সরকারের এ পর্যন্ত প্রচেষ্টা ওপদক্ষেপ সম্পর্কে আপনাদের কি মনে হয়? ১ থেকে ৫ হল দারুণকাজ, খুবই ভালো কাজ, ভালো, সঠিক, অপ্রয়োজনীয় 5. পুরনো ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোটের লেনদেন নিষিদ্ধ করার জন্যমোদী সরকার যে পদক্ষেপ নিয়েছে, সে সম্পর্কে আপনাদের মতামত কি? 6. আপনারা কি মনে করেন যে, নোট বাতিলের এই সিদ্ধান্ত কালোটাকা, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস দমনে সাহায্য করবে? 8. দুর্নীতি, কালো টাকা, জাল নোট ও সন্ত্রাসের বিরুদ্ধেআমাদের এই অভিযানে আপনাদের অসুবিধা ভোগ করতে হচ্ছে বলে আপনারা কি কিছু মনে করছেন? 9. আপনারা কি বিশ্বাস করেন যে, কালো টাকা, দুর্নীতি ওসন্ত্রাসের সমর্থনে দুর্নীতি বিরোধী অভিযান চালানো হচ্ছে? 10. প্রধানমন্ত্রীনরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে বিনিময়ের জন্য আপনাদের কি কোনও চিন্তাভাবনা, পরামর্শ বাদৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে? প্রতিনিধিত্বমূলকশাসন ব্যবস্থা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর চিন্তাভাবনার সঙ্গে সাজুয্য রেখেই দেশবাসীরকাছে প্রধান প্রধান নীতি ও তার রূপায়ণ সম্পর্কে মতামত আহ্বান করা হয়েছে। ৫০০ ও ১০০০টাকার নোটে লেনদেনের বৈধতা বাতিলের সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রশ্নোত্তরের মাধ্যমেদেশের নাগরিকদের কাছ থেকে মতামত সংগ্রহের লক্ষ্যেই প্রধানমন্ত্রীর এই বিশেষ ট্যুইটবার্তা। সরকারি এই সিদ্ধান্তের বাস্তবায়ন কিভাবে আরও জোরদার করে তোলা যায়, সেসম্পর্কেও পরামর্শ ও মতামত জানতে চেয়েছেন তিনি। নিগোশিয়েবল ইন্সট্রুমেন্টস (সংশোধন) অধ্যাদেশ জারির বিষয়টি অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আমারপ্রিয় দেশবাসী, সাদর নমস্কার! একদিকে যখন দেশ উৎসবে মেতে রয়েছে, তখন হিন্দুস্থানের কোনোপ্রান্ত থেকে হিংসার খবর আসলে দুশ্চিন্তা হওয়া স্বাভাবিক। প্রাচীনকাল থেকে আমাদের পূর্বসূরীরাযে সর্বজনীন মূল্যবোধকে, অহিংসাকে, সম্প্রীতিকে লালন করে এসেছে, তা আমাদের জীবনেরসঙ্গে জড়িয়ে রয়েছে। ‘অহিংসা পরম ধর্ম’ – এটা আমরা শৈশব থেকে শুনে আসছি, বলে আসছি।আমি লালকেল্লা থেকেও বলেছিলাম, বিশ্বাসের নামে হিংসা বরদাস্ত করা হবে না। তাসাম্প্রদায়িক বিশ্বাস হতে পারে, রাজনৈতিক চিন্তাধারার প্রতি বিশ্বাস হতে পারে বাকোনো ব্যক্তি কি কোনো পরম্পরার প্রতি বিশ্বাস হতে পারে – কোনো ক্ষেত্রেই হিংসাবরদাস্ত করা হবে না। বিশ্বাসের নামে আইন হাতে তুলে নেওয়ার অধিকার কারোরই নেই। ডা.বাবাসাহেব আম্বেদকর আমাদের যে সংবিধান দিয়ে গেছেন, প্রত্যেক ব্যক্তির সুবিচারপাওয়ার অধিকার সেখানে সুনিশ্চিৎ করা আছে। আমি দেশবাসীকে আশ্বাস দিতে চাইছি, আইনহাতে তুলে নেওয়া লোকেদের বিরুদ্ধে, হিংসার পথে যাওয়া যে কাউকেই – ব্যক্তি বাসম্প্রদায় যেই হোক – কাউকেই সরকার বা দেশ বরদাস্ত করবে না। প্রত্যেককেই আইনের কাছেনতজানু হতেই হবে, আইন তার বিচার করবে ও অপরাধীকে শাস্তি পেতেই হবে। আমার প্রিয়দেশবাসী, আমাদের দেশ বৈচিত্র্যে ছেয়ে আছে এবং এই বৈচিত্র্য শুধু খাওয়া-দাওয়া,পোষাক-পরিচ্ছদ, আচার-ব্যবহারের মধ্যেই শুধুমাত্র সীমাবদ্ধ নয়। জীবনের প্রতিটিআচরণের মধ্যেই এই বৈচিত্র্য নজরে আসে। আজ আমি উৎসবের কথা বলছি, তাই প্রথমেই আমি আপনাদের ‘মিচ্ছামিদুক্কড়ম’ বলতে চাই। গতকাল জৈন সমাজের ‘সম্বৎসরি’ উৎসব পালিত হয়েছে। জৈন সমাজেভাদ্র মাসে ‘পর্যুষণ পরব’ পালন করা হয়। সম্বৎসরি উৎসব ক্ষমা, অহিংসা আর মৈত্রীরপ্রতিক। আর একে ‘ক্ষমা-বাণী’ উৎসবও বলা হয় এবং এই দিনে একে অপরকে ‘মিচ্ছামিদুক্কড়ম’ বলে শুভেচ্ছা জানানোর ঐতিহ্য আছে। তাছাড়া আমাদেরশাস্ত্রে আছে ‘ক্ষমা বীরস্য ভূষণম’ অর্থাৎ ক্ষমা বীরের ভূষণ। যাঁরা ক্ষমা করতেপারেন, তাঁরা প্রকৃত বীর। এই চর্চা আমরা বহুদিন ধরে শুনে আসছি এবং মহাত্মা গান্ধীপ্রায়ই বলতেন – ক্ষমা করা একমাত্র শক্তিশালী ও বলবান ব্যক্তিরই বৈশিষ্ট্য। আমার প্রিয়দেশবাসী, এখন ভারতবর্ষের সর্বত্রই প্রবল উৎসাহ ও উদ্দীপনার সঙ্গে গণেশ চতুর্থীপালন করা হচ্ছে। আর যখন গণেশ চতুর্থীর কথা উঠল তখন সর্বজনীন গণেশোৎসবের প্রসঙ্গস্বাভাবিকভাবে চলে আসে। তাছাড়া স্বাধীনতালাভের পর এই উৎসব সমাজ-শিক্ষা, সামাজিক চেতনা বিকাশেরএক প্রতীক হিসাবে মর্যাদা পেয়েছে। গণেশ চতুর্থীর এই মহা পরব ১০ দিন ধরে চলে। আর এইমহোৎসবকে ঐক্য, সাম্য আর পবিত্রতার প্রতীক হিসেবে আমরা জানি। এই উপলক্ষে প্রত্যেকদেশবাসীকে জানাই গণেশোৎসবের অনেক অনেক শুভকামনা। এখন কেরালায়‘ওনাম’ উৎসব পালিত হচ্ছে। ভারতের বহুবর্ণের উৎসবের মধ্যে ‘ওনাম’ কেরালার এক প্রধানউৎসব। এই উৎসব নিজের সামাজিক এবং সাংস্কৃতিক মহত্বের জন্য বিশিষ্ট। ওনাম উৎসবকেরালার সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। আর এখন তো এই উৎসবও পর্যটনেরআকর্ষণের এক কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছে। তাছাড়া আমি তো দেশবাসীকে বলবই যে, গুজরাটের যেমন নবরাত্রি উৎসব বা পশ্চিমবাংলারদুর্গোৎসব – সেভাবেই আজ পর্যটনের মূল আকর্ষণ হয়ে উঠেছে – এই ওনাম। আমাদের দেশেরঅন্যান্য উৎসবগুলিতেও বিদেশিদের আকর্ষণ করার প্রচুর সুযোগ রয়ে গেছে। এই ভাবনায় –আমরা আগামী দিনে কি কি পদক্ষেপ নিতে পারি – আমাদের ভাবতে হবে বৈকি! উৎসবের এইআনন্দমেলায় ক’দিন পরেই ‘ঈদ-উল-জুহা’ পালিত হবে। সমস্ত দেশবাসীকে জানাই‘ঈদ-উল-জুহা’র অনেক অনেক অভিনন্দন আর শুভকামনা! এই উৎসব আমাদের কাছে এক ভরসা ওবিশ্বাসের প্রতীক তো বটেই, আমাদের ‘ NewIndia ’-য় উৎসবকে স্বচ্ছতার প্রতীকরূপেও আমাদেরপ্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমাদের পারিবারিক জীবনে তো উৎসব আর স্বচ্ছতা অঙ্গাঙ্গীভাবেযুক্ত। উৎসবের প্রস্তুতিই শুরু হয় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার মধ্য দিয়ে। একথা নতুন নয়,কিন্তু স্বচ্ছতাকে সামাজিক স্বভাবে পরিণত করা খুব জরুরী। সর্বজনীনরূপে স্বচ্ছতাশুধুমাত্র আমাদের ঘরেই নয়, প্রতিটি গ্রামে, প্রতিটি শহরে, আমাদের রাজ্যে, আমাদেরদেশে – এই স্বচ্ছতা ও উৎসবকে এক সুতোয় বাঁধতে হবে – যে বন্ধন হবে অটুট। আমার প্রিয়দেশবাসী, আধুনিক হয়ে ওঠার পরিভাষা ক্রমশ বদলাচ্ছে। কেউ কেউ গণেশকেভেষজ রঙ দিয়ে রঙ করছেন, কেউ আবার কাগজ কেটে আঠা দিয়ে তাতে লাগাচ্ছে। একটু একটু করেএর প্রয়োগ প্রতিটি পরিবারেই ক্রমশ বাড়ছে। ‘পরিবেশ সচেতনতা’র এই বিশাল কর্মকাণ্ড এইগনেশোৎসবেই দেখার সুযোগ হল, যা আগে কখনোই সম্ভব হয় নি। আমাদের Media House এই eco-friendly গণেশ মূর্তি তৈরিরবিষয়ে সচেতন করে তুলছে, উৎসাহিত করছে এবং guide –ও করছে। দেখুন, কত বড় পরিবর্তন এসে গেছে – আর এই পরিবর্তন সত্যিই সুখের। আরযেটা আমি বলছিলাম যে আমাদের দেশ কোটি কোটি মেধাবী মানুষে পূর্ণ। খুব ভালো লাগে,যখন নতুন নতুন আবিষ্কারের কথা জানতে পারি। আমাকে কেউ একজন এমন এক ভদ্রলোকের কথাবলছিলেন, যিনি নিজে একজন ইঞ্জিনীয়র। তিনবছর আগেআমরা যে স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করেছিলাম, আগামী দোসরা অক্টোবর তার তৃতীয়বর্ষপূর্তি। ইতিমধ্যে তার ইতিবাচক দিকগুলো আমাদের নজরে এসেছে। বিগত কিছুদিনধরে গুজরাতের ভয়ংকর বন্যার কথা আমরা শুনছি। নিজেরা ঘামঝরিয়েছেন এবং সবাই কাজে হাত লাগিয়েছেন। স্বচ্ছতারউদ্দেশ্যে সংঘবদ্ধ হয়ে কাজ করার এমন এক অনুপম উদাহরণ ‘জমীয়েত-উলেমা-এ-হিন্দ’-এরকর্মকর্তারা প্রস্তুত করেছেন যা সবাইকে প্রেরণা দেবে। সমর্পিতভাবে স্বচ্ছতার জন্যকরার এই প্রচেষ্টা যদি আমাদের স্বভাবের একটি স্থায়ী অঙ্গ হয়ে যায় তবে আমাদের দেশকোথা থেকে কোথায় পৌঁছে যেতে পারে। আমার প্রিয়দেশবাসী, আমি আপনাদের উদ্দেশ্যে আহ্বান জানাচ্ছি যে, আসুন, আবার একবার, দোসরাঅক্টোবর ‘গান্ধী জয়ন্তী’র ১৫-২০ দিন আগে থাকতে ‘স্বচ্ছতাই সেবা’-র প্রচার শুরুকরি। যেরকম আগে বলা হত, ‘জল সেবাই প্রভু সেবা’ এবং ‘স্বচ্ছতাই সেবা’ – ঠিক সেইরকম।পুরো দেশে স্বচ্ছতার অনুকূল পরিবেশ তৈরি করি। যেরকম সুযোগ পাওয়া যাবে এবং যখনইসুযোগ মিলবে আমরা যেন সুযোগ খুঁজি ও তার সদ্ব্যবহার করি। আশেপাশের বস্তিএলাকাগুলিতে যান, কাছেপিঠের গ্রামে যান, একে এক আন্দোলনের রূপ দিন। আমি সমস্তএন-জি-ও, স্কুল, কলেজ, সামাজিক-সাংস্কৃতিক-রাজনৈতিক নেতৃবর্গ, সরকারী আমলা,কালেক্টর এবং পঞ্চায়েত প্রধানদের কাছে আবেদন রাখছি, দোসরা অক্টোবর মহাত্মা গান্ধীরজন্মজয়ন্তীর পনেরো দিন আগেই এমন এক আবহ তৈরি করি, পরিচ্ছন্ন পরিবেশ তৈরি করি যাতেগান্ধীজীর স্বপ্নের ভারত বাস্তবায়িত হয়। পানীয় জল ওস্বচ্ছতা মন্ত্রক, mygov.in -এ একটি বিভাগ তৈরি করেছে যেখানে শৌচালয় তৈরির পর আপনিআপনার নিজের নাম ও সেই পরিবারের নাম তালিকাভুক্ত করতে পারেন, যাঁদের আপনি এই কাজেসাহায্য করেছেন। আমার সোস্যাল মিডিয়ার বন্ধুরা ভার্চুয়্যাল দুনিয়ায় এমন কিছুসৃজনশীল প্রচার চালাতে পারেন যা বাস্তবে প্রেরণাদায়ক হতে পারে। পানীয় জল ওস্বচ্ছতা মন্ত্রক দ্বারা ‘স্বচ্ছ সংকল্প থেকে স্বচ্ছ সিদ্ধি’ অভিযানের অন্তর্গতপ্রবন্ধ, স্বল্পদৈর্ঘ্যের চলচ্চিত্র এবং ছবি আঁকার প্রতিযোগিতার আয়োজন করা যেতেপারে। এই প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণকারীদের মধ্যে থেকে জেলাস্তরে তিনজন এবং রাজ্যস্তরেতিনজনকে সেরা নির্বাচিত করা হবে ও পুরস্কৃত করা হবে। আমি আপনাদের আহ্বান জানাচ্ছি,স্বচ্ছতা অভিযানে আপনারা এভাবেও অংশ নিতে পারেন। স্বচ্ছতার জন্য কোন না কোনপদক্ষেপ অবশ্যই নিন। এই পনের দিনেরসাফাই অভিযানের পর, ‘স্বচ্ছতাই সেবা’ এই মন্ত্র পালনের পর, দোসরা অক্টোবর যখন আমরাগান্ধীজয়ন্তী পালন করব এবং পূজনীয় বাপুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি জানাব, তখন আমাদের মন একনির্মল আনন্দে পরিপূর্ণ হয়ে উঠবে। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি আপনাদেরকাছে বিশেষভাবে ঋণ স্বীকার করতে চাই ও আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাতে চাই, কারণ আপনারাদীর্ঘদিন ধরে ‘মন কি বাত’-এর সঙ্গে যুক্ত থেকেছেন। শুধু তাই নয়, দেশের প্রতি কোণথেকে অসংখ্য মানুষ এই অনুষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত হয়ে চলেছেন। শ্রোতার সংখ্যা কয়েককোটি এবং লক্ষাধিক মানুষ কখনও চিঠি মাধ্যমে, কখনও message পাঠিয়ে বা ফোনে যোগাযোগ করেন,বার্তা পাঠান যা আমার কাছে এক পরম প্রাপ্তি ও দুর্লভ সম্পদ। দেশের জনগণের ভাবনা ওমনের কথা জানার এটা আমার কাছে একটা বড় সুযোগ। আপনারা যতটা ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানেরঅপেক্ষা করেন, তার চেয়ে বেশি অপেক্ষায় আমি থাকি আপনাদের খবরাখবরের। আমি অধীরআগ্রহে অপেক্ষা করি কারণ, আপনাদের থেকে আমি অনেক কিছু শিখতে পারি। আমি আমার কাজ ওভবিষ্যৎ পরিকল্পনাগুলি পরখ করার সুযোগ পাই। আমি চেষ্টা করি আপনাদের মতামত যতবেশি সম্ভব নিজেই দেখার, শোনার, পড়ার ও জানার। “প্রধানমন্ত্রীজী,আমি পুণা থেকে অপর্ণা বলছি। আমি আমার এক বান্ধবীর কথা আপনাকে জানাতে চাই। সে সবসময়লোকেদের সাহায্য করার চেষ্টা করে কিন্তু ওর একটা বদভ্যাস আছে যা দেখে আমি খুবআশ্চর্য হই। আমি একবার কেনাকাটা করতে ওর সঙ্গে মলে গিয়েছিলাম। দেখলাম ও একটাদু-হাজার টাকার শাড়ি কিনল, পিৎজার জন্য ৪৫০ টাকা অনায়াসে খরচ করল। অথচ ‘মল’-এযাওয়ার জন্য অটোওয়ালার সঙ্গে পাঁচ টাকার জন্য অনেকক্ষণ দরদাম করল। ফেরার পথে সবজিকেনার সময়ও ও একই কাজ করল ও দরদাম করে চার-পাঁচটাকা বাঁচাল। আমার খুব খারাপলেগেছিল। আমার বিশ্বাস,এই ফোনের বিষয়বস্তু শোনার পর আপনারা কেবল সজাগই হননি, এমন ভুল না করার সিদ্ধান্তনিয়ে ফেলেছেন। শুধু তাই নয়, শোরুমে শাড়ি কিনতেগেলে কোনো দরাদরি করি না, কিন্তু কোনো গরীবের সঙ্গে কাজ পড়লে দরাদরি না করে ছাড়িনা। এতে গরীবের মনে কী হয় তা কখনও ভেবে দেখেছেন আপনি? দু’টাকা, পাঁচ টাকায় আপনার জীবনে কোনো ফারাক পড়বে না কিন্তু আপনার এই সামান্য আচরণতার মনে কতটা গভীর আঘাত দেয় তা কখনও ভেবে দেখেছেন? ম্যাডাম, আমি আপনার কাছেকৃতজ্ঞ, আপনি এমন হৃদয়স্পর্শী ফোন করে এক বার্তা দিলেন আমাকে। আমার বিশ্বাস যেআমার দেশবাসীর মধ্যে গরীবের সঙ্গে এই আচরণের অভ্যাস থাকলে নিশ্চিতভাবে তাঁরা তাত্যাগ করবেন। আমার প্রিয় তরুণবন্ধুরা, ২৯শে অগাস্ট তারিখটা পুরো দেশ ‘জাতীয় ক্রীড়া দিবস’ হিসাবে উদযাপন করে। এইদিনটি মহান হকি খেলোয়াড় এবং হকির জাদুকর মেজর ধ্যানচাঁদজীর জন্মদিন। হকিতে ওঁরঅবদান অতুলনীয়। আমি এই ব্যাপারটাকে এই কারণে স্মরণ করছি কারণ আমি চাই যে আমাদেরদেশের নতুন প্রজন্ম খেলাধুলোর সঙ্গে যুক্ত হোক। খেলাধুলো আমাদের জীবনের অঙ্গ হয়েউঠুক। যদি আমরা বিশ্বের ‘তরুণ রাষ্ট্র’ হই তবে খেলার মাঠেও এই তারুণ্য নজরে পড়াউচিত। খেলাধুলো মানে ফিজিক্যাল ফিটনেস, মেন্টাল অ্যালার্টনেস, পার্সোনালিটিএনহ্যান্সমেন্ট। এর থেকে বেশি আর কি চাই? একদিক থেকে খেলাধুলো হৃদয়ের মেলবন্ধনঘটানোর এক দারুণ দাওয়াই। আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্ম খেলার জগতে এগিয়ে আসুক আর আজকম্প্যুটারের যুগে আমি এ ব্যাপারেও সচেতন করতে চাইব যে প্লেয়িং ফিল্ড,প্লে-স্টেশনের থেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কম্প্যুটারে ফিফা খেলুন কিন্তু বাইরেময়দানেও তো কখনও ফুটবলের সঙ্গে কসরৎ করে দেখান। কম্প্যুটারে হয়ত ক্রিকেট খেলেন,কিন্তু খোলা ময়দানে আকাশের নীচে ক্রিকেট খেলার আনন্দই আলাদা। একটা সময় ছিল যখনপরিবারের ছোটরা বাইরে গেলে মা সবার আগে জিজ্ঞাসা করতেন যে তুমি কখন ফিরবে? আমাদের তরুণদের জন্য খুশির খবর যে ৬ থেকে ২৮শে অক্টোবর ভারতে ফিফা আণ্ডারসেভেনটিন ওয়ার্ল্ড কাপ আয়োজিত হতে চলেছে। দুনিয়ার চব্বিশটি টিম ভারতকে নিজেদের ঘরবানাতে চলেছে। আসুন, বিশ্ব থেকে আসা আমাদের তরুণ অতিথিদের খেলার উৎসবের সঙ্গেইস্বাগত জানাই, খেলা এনজয় করি, দেশে এক উপযুক্ত পরিবেশ বানাই। কখনও একটানা চল্লিশ দিন জলেই থাকবে। কোন্‌ ভারতবাসী আছেন যিনি গর্বিত হবেন না আমাদের এই কন্যাদের নিয়ে! আমি এইমেয়েদের অনুভবকে সেলাম জানাই, আর আমি ওঁদের বলেছি যে গোটা দেশের সঙ্গে নিজেদেরভাবনা ভাগ করে নিতে। আমিও ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’-এ ওঁদের ভাবনার জন্য একটা আলাদাব্যবস্থা করব যাতে আপনারা সেগুলো পড়তে পারেন। কারণ, এটা এক দিক থেকে সাহসেরআখ্যান, নিজেদের ভাবনার কথা হবে সেটা, আর আমার আনন্দ হবে এই মেয়েদের কথা আপনাদেরকাছে পৌঁছে দিতে। এই কন্যাদের প্রতি আমার অনেক-অনেক শুভেচ্ছা, ঢের-ঢের আশীর্বাদ। আমার প্রিয়দেশবাসী, ৫ই সেপ্টেম্বর আমরা সবাই ‘শিক্ষক দিবস’ পালন করি। আমাদের দেশের ভূতপূর্বরাষ্ট্রপতি ডক্টর রাধাকৃষ্ণণ-জীর জন্মদিন। উনি রাষ্ট্রপতি ছিলেন কিন্তু গোটা জীবনধরে নিজেকে একজন শিক্ষক হিসাবেই তৈরি করেছিলেন। উনি সবসময় শিক্ষক হিসাবে বাঁচতেইপছন্দ করতেন। তিনি শিক্ষার প্রতি সমর্পিত প্রাণ ছিলেন। তিনি ছিলেন একজন বিদ্বান,রাজনীতিক, ভারতের রাষ্ট্রপতি, কিন্তু সর্বোপরি একজন শিক্ষক। একজন শিক্ষকেরমহত্ত্বম গুণ তাঁর ছাত্রদের মধ্যে সৃজনের মানসিকতা জাগানো এবং জ্ঞানার্জনের আনন্দদান। আমাদের দেশেযখন transformation -এর কথা আসবে, ঠিকযেভাবে পরিবারের মায়ের কথা মনে আসে একইরকম ভাবে সমাজে শিক্ষকের ভূমিকার কথা মনেপড়বে। Transformation -এ শিক্ষকদের বিশালভূমিকা থাকে। প্রত্যেক শিক্ষকের জীবনে কোনো না কোনো ছাত্রের transformation কারিগর হওয়ার ঘটনারয়েছে। আসুন, ‘Teachto Transform’ -এই মন্ত্র নিয়ে আমরা এগিয়ে চলি। আমার প্রিয়দেশবাসী, ‘প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা ’, Financial inclusion শুধু ভারতনয়, বিশ্বের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের কাছে চর্চার বিষয় হয়ে উঠেছে। ২০১৪ সালের ২৮শেআগষ্ট একটা স্বপ্ন নিয়ে এই যোজনা শুরু হয়েছিল। কাল, ২৮শে আগষ্ট ‘প্রধানমন্ত্রী জনধন যোজনা’র তিন বছর পূর্ণ হবে। ৩০ কোটি ভারতবাসী এই যোজনায় অংশগ্রহণ করে তাঁদেরপ্রথম ব্যাঙ্ক অ্যাকাউণ্ট খুলেছেন। বিশ্বের বহু দেশের জনসংখ্যার থেকেও বেশি এইনতুন অ্যাকাউণ্টধারী নাগরিকের সংখ্যা। ঘরে বা পকেটে টাকা থাকলে বাজেখরচের দিকে মন যায়। আগামী দিনে কোনও গুরুত্বপূর্ণ কাজেও সে টাকা লাগতে পারে। ‘প্রধানমন্ত্রী জীবনজ্যোতি বীমা যোজনা’,‘প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বীমা যোজনা’ যথাক্রমে মাত্র একটাকা ও তিন টাকা প্রিমিয়ামদিয়ে আজ ঐ গরীব মানুষের জীবনে নতুন আত্মবিশ্বাস তৈরি হয়েছে। কোনও পরিবারে এই গরীবমানুষ যখন সংকটে পড়েছে – পরিবারের প্রধানের মৃত্যু হয়েছে, ঐ একটা প্রিমিয়ামের সুফলদু’লাখ টাকা পেয়ে যাচ্ছেন। আপনাদের কাছে এইসব তথ্য পৌঁছনোর ব্যবস্থা হবে এবং তেমন উৎসাহব্যঞ্জক ঘটনামিডিয়াও প্রচার করতে পারে। তারাও সফল ব্যক্তিত্বদের সাক্ষাৎকার নিয়ে নতুনপ্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে পারে। আমার প্রিয়দেশবাসী, আপনাদের জানাই, ‘মিচ্ছামী দুক্কড়ম’! প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বৃহস্পতিবার জল সম্পদ মন্ত্রকের নদীসমূহের আন্ত:সংযুক্তকরণ সম্পর্কিত বর্তমান অবস্থা ও অগ্রগতি বিষয়ক প্রতিবেদনে অনুমোদন দিয়েছে। দেশের নদীসমূহের আন্ত:সংযুক্তকরণ সম্পর্কে ২০০২ সালে সুপ্রিম কোর্টে যে রিট আবেদন করা হয়েছিল তার পরিপ্রেক্ষিতে সংশ্লিস্ট মন্ত্রককে দেওয়া সুপ্রিম কোর্টের রায়ের ভিত্তিতে এই প্রতিবেদন প্রস্তুত করা হয়। জাতীয় প্রেক্ষাপট পরিকল্পনার আওতায় এই বিষয়টি নদীসমূহের আন্ত:সংযোগকরণ প্রকল্পগুলি রূপায়নের কাজ নিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে। মন্ত্রিসভাকে তথ্য দিয়ে অবগত করতে নদীসমূহের আন্ত:সংযোগকরণ কর্মসূচি রূপায়নের জন্য গঠিত ‘বিশেষ কমিটি’ প্রতিবছর দু’বার করে এই অগ্রগতি বিষয়ক ষান্মাসিক প্রতিবেদন পেশ করবে। দেশের সার্বিক বিকাশের লক্ষ্যে সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী । আদিলাবাদ জেলার জয়পুরে সিঙ্গারেনিকোলিয়ারির ১,২০০ মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রও তিনি এইউপলক্ষে উৎসর্গ করেন জাতির উদ্দেশে। রাজ্যেরসাধারণ মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণে তেলেঙ্গানা সরকার যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করেছেতারও বিশেষ প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। ‘মিশন ভগীরথ’-এর সূচনায় রাজ্য সরকারেরসক্রিয় ভূমিকারও সপ্রশংস উল্লেখ করেন তিনি। রাজ্যবাসীর কাছে পানীয় জলের সুযোগসম্প্রসারণের লক্ষ্যেই এই মিশনের সূচনা বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যেতেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী কে চন্দ্রশেখর রাও যখনই তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎকারেমিলিত হতেন, তখনই তিনি রাজ্যের উন্নয়ন ও জলের সুষম যোগান ও বন্টনের কথাই বারবারউল্লেখ করতেন। জলের গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশেরসকল নাগরিকের উচিত জল সংরক্ষণের কাজে উদ্যোগ গ্রহণ করা। নতুনরেলপথ প্রকল্পের শিলান্যাস প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট এলাকারজনসাধারণের এক দীর্ঘদিনের দাবি ও প্রত্যাশা এখন পূরণ হতে চলেছে। অন্যদিকে, সারপ্রকল্পটিতে উপকৃত হবেন দেশের কৃষক-সাধারণ। চিনির মূল্যবৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে চিনি ব্যবসায়ীদের মজুতের সীমা স্থির করে দেওয়ার জন্য রাজ্যগুলিকে অনুমতিদানের সিদ্ধান্ত নিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কেরলে বন্যার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেছেন। পর্যালোচনা বৈঠকের পর রাজ্যে বন্যা কবলিত কয়েকটি জেলার বন্যা পরিস্থিতি তিনি আকাশপথে পর্যবেক্ষণ করেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, রাজ্যপাল, কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী কে জি আলফোন্স ও উচ্চ পদস্থ সরকারি আধিকারিকগণ। বন্যায় দুর্ভাগ্যজনকভাবে জীবন ও সম্পত্তিহানিতে প্রধানমন্ত্রী গভীর দুঃখ ও শোক প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পিনারাই বিজয়ন ও উচ্চ পদস্থ রাজ্য সরকারি আধিকারিকদের সঙ্গে এক বৈঠকে বন্যা পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। পর্যালোচনা বৈঠকের পর, প্রধানমন্ত্রী কেরলের জন্য ৫০০ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তাদানের কথা ঘোষণা করেন। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী গত ১২ তারিখ রাজ্যের জন্য যে ১০০ কোটি টাকা সহায়তাদানের কথা ঘোষণা করেছিলেন, এই অর্থ তার অতিরিক্ত। প্রধানমন্ত্রী রাজ্য সরকারকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, রাজ্যের অনুরোধের প্রেক্ষিতে খাদ্যশস্য, ওষুধপত্র সহ যাবতীয় ত্রাণ-সামগ্রী সরবরাহ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে প্রত্যেক মৃত ব্যক্তির নিকটাত্মীয়কে ২ লক্ষ টাকা এবং গুরুতর আহতদের ৫০ হাজার টাকা এককালীন সহায়তা দেওয়ার কথা ঘোষণা করেন। সামাজিক সুরক্ষা প্রকল্পের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত পরিবার ও উপভোক্তাদের সময় মতো ক্ষতি পূরণ দেওয়ার জন্য বিশেষ মূল্যায়ন শিবির আয়োজন করার জন্য প্রধানমন্ত্রী বিমা সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেন। কৃষিজীবীদের ফসল বিমা যোজনার আওতায় প্রাপ্য অর্থ আগাম মিটিয়ে দেওয়ারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ভারতের জাতীয় মহাসড়ক কর্তৃপক্ষকে (এনএইচএআই) অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বন্যায় ক্ষতিগ্রস্ত রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ জাতীয় সড়কগুলি মেরামতের নির্দেশ দিয়েছেন। বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থা পুনর্বহাল করতে রাজ্য সরকারকে সম্ভাব্য সব ধরণের সহায়তা দিতে জাতীয় তাপবিদ্যুৎ নিগম (এনটিপিসি) এবং পিজিসিআইএল – এর মতো কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলিকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। বিধ্বংসী বন্যায় যেসব গ্রামবাসীর কাঁচা বাড়ি বিলীন হয়ে গেছে, তাঁদের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (গ্রামীণ) আওতায় অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে বাড়ি দেওয়া হবে। ২০১৮-১৯ – এর শ্রম বাজেটে মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মনিশ্চয়তা প্রকল্পের আওতায় ৫ কোটি ৫০ লক্ষ শ্রম দিবস মঞ্জুর করা হয়েছে। এই প্রকল্প খাতে রাজ্যের চাহিদা অনুযায়ী শ্রম দিবস বাড়ানোর যে কোনও প্রস্তাব বিবেচনা করা হবে বলে রাজ্যকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। সুসংহত বাগিচা উন্নয়ন মিশনের আওতায় ক্ষতিগ্রস্ত উদ্যানে চারাগাছ পুনঃরোপণের জন্য কৃষকদের সহায়তা দেওয়া হবে। কেন্দ্রীয় সরকার কেরলের বন্যা পরিস্থিতির উপর নিরবচ্ছিন্ন ও সতর্ক নজর রেখে চলেছে। প্রতিকূল পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজ্য সরকারকে যাবতীয় সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। বন্যা পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী নিয়মিত রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। জাতীয় বিপর্যয় ত্রাণ তহবিল থেকে আগাম ১০০ কোটি টাকা দেওয়ার কথাও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী ঘোষণা করেন। রাজ্য সরকারের গত ২১ জুলাই জমা দেওয়া স্মারকপত্র অনুযায়ী একটি কেন্দ্রীয় দল গত ৭ – ১২ আগস্ট পর্যন্ত বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় গিয়ে সেখানকার ক্ষয়ক্ষতি খতিয়ে দেখেন। রাজ্যে উদ্ধার ও অনুসন্ধানের কাজে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর (এনডিআরএফ) ৫৭টি দলের প্রায় ১ হাজার ৩০০ জন কর্মী ৪৩৫টি নৌকার সাহায্যেত্রাণ ও উদ্ধারের কাজ চালাচ্ছে। ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য পরিচালনার জন্য বিএসএফ, সিআইএসএফ সহ আরএএফ – এর ৫টি করে কোম্পানি মোতায়েন করা হয়েছে। ত্রাণ ও উদ্ধারকার্যে রাজ্যকে সহায়তার জন্য সেনাবাহিনী, বিমান বাহিনী, নৌ-বাহিনী ও উপকূল রক্ষী বাহিনীকে মোতায়েন করা হয়েছে। ৩৮টি হেলিকপ্টারের সাহায্যে ত্রাণ ও উদ্ধারকার্য চালানো হচ্ছে। এছাড়াও, বন্যা দুর্গতদের কাছে ত্রাণ পৌঁছে দেওয়ার কাজে ২০টি যুদ্ধ বিমান কাজে লাগানো হচ্ছে। সেনাবাহিনী ৭৯০ জন প্রশিক্ষিত কর্মী নিয়ে গঠিত ইঞ্জিনিয়ারিং টাস্কফোর্সের ১০টি দলকে কাজে লাগাচ্ছে। নৌ-বাহিনীর ৮২টি দল নিরন্তর কাজ করে চলছে। উপকূল রক্ষী বাহিনী ও ৪২টি দল, দুটি হেলিকপ্টার ও ২টি জাহাজ মোতায়েন করেছে। অপ্রত্যাশিত এই পরিস্থিতিতে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় রাজ্য সরকার যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন। জলবন্দী মানুষজনকে দ্রুত উদ্ধারের ওপর তিনি গুরুত্ব দেন। আমি কন্যাকুমারীতে আসতে পেরে আনন্দিত হয়েছি। আমি শ্রদ্ধেয় আম্মা, জয়ললিতাজি’র প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করে আমার বক্তব্য শুরু করতে চাই। তামিলনাড়ুর মানুষের জন্য তাঁর ভালো কাজ বহু প্রজন্ম ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তামিলনাড়ু সরকার তাঁর উন্নয়নের স্বপ্নপূরণে কঠোর পরিশ্রম করে চলেছে জেনে আমি সুখি হয়েছি। আমি অত্যন্ত গর্বিত যে, ভারতের প্রথম মহিলা প্রতিরক্ষামন্ত্রী নির্মলাজি তামিলনাড়ুর মানুষ। আমাদের অসম সাহসী উইং কমান্ডার অভিনন্দনও যে তামিলনাড়ুর মানুষ, তাঁর জন্য প্রত্যেক ভারতীয় গর্বিত। কয়েকদিন আগে এখানকার বিবেকানন্দ কেন্দ্র গান্ধী শান্তি পুরস্কার পেয়েছে, তাই আমি এই কেন্দ্রকে অভিনন্দন জানতে চাই। গোষ্ঠি উন্নয়নে এই কেন্দ্রের সেবা শুধু প্রশংসনীয় নয়, প্রেরণাদায়ক ও বটে। কিছুক্ষণ আগে আমরা সড়ক, রেল ও মহাসড়কের কয়েকটি উন্নয়নমূলক কাজের উদ্বোধন করেছি এবং ভিত্তিপ্রস্তর স্হাপন করেছি। আমি মাদুরাই ও চেন্নাই-এর মধ্যে দ্রুততম ট্রেন ‘তেজস’এর যাত্রার সূচনা করেছি। রামেশ্বরম থেকে ধনুস্কোডি’র মধ্যে রেললাইনের ভিত্তিপ্রস্তরও আজ স্হাপন করা হয়েছে। তবে একেবারে না হওয়ার থেকে দেরিতে হলেও ভালো। আপনারা শুনে খুশি হবেন যে একটি নতুন পাম্বান রেল সেতু নির্মাণ করা হবে। বর্তমানে ভারত বিশ্বের মধ্যে দ্রুততম বর্দ্ধনশীল এক বৃহৎ অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। ভারত রেকর্ডগুলিতে পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামো নির্মাণ করছে। আমরা বৃহত্তম স্টার্ট-আপ ব্যবস্হার দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। এছাড়া ভারতেই বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্হ্য পরিষেবা আয়ুষ্মান ভারত পরিচালিত হচ্ছে। এই গত রবিবারই এ বছরের বাজেটে ঘোষিত প্রধানমন্ত্রী কিষান সম্মান নিধি প্রকল্পের সূচনা হয়েছে। এই প্রকল্পে, অনুর্দ্ধ ৫ একর পর্যন্ত জমির মালিক কৃষকদের কেন্দ্রীয় সরকার তিনটি কিস্তিতে প্রতি বছর ৬ হাজার টাকা আর্থিক সহায়তা দেবে। ১ কোটি ১০ লক্ষের বেশি কৃষকের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ইতিমধ্যেই এই অর্থের প্রথম কিস্তি পাঠানো হয়েছে। আপনারা ভাবতে পারেন, পয়লা ফেব্রুয়ারী ঘোষিত একটি প্রকল্প এই মাসেই বাস্তবে পরিণত হয়েছে। আমরা ২৬ দিনের মধ্যে এই প্রকল্পটির সূচনা নিশ্চিত করতে ২৪ ঘন্টা নিরবচ্ছিন্নভাবে কাজ করেছি। লিপ ইয়ার এবং ফুটবল বিশ্বকাপ প্রতি চার বছর অন্তর একবার আসে, অনুরূপভাবে কংগ্রেসের অসম্পূর্ণ ঋণ মকুবের ঘটনা নির্বাচনের আগে কেবলমাত্র একবার আসে। কৃষকদের জন্য কোনোকিছুই না করে শেষে তারা আসে এবং বলে আমরা তোমাদের ঋণ মকুব করে দেব। বাস্তবে কংগ্রেসের ঋণ মকুবের সিদ্ধান্তের ফলে কেবলমাত্র হাতে গোনা কিছু কৃষক উপকৃত হন। এনডিএ- সরকারের কিষাণ সম্মাননিধি কয়েক বছর পর ঘোষিত এই ধরনের কোনো প্রকল্প নয়। প্রতি বছর কৃষকদের সুবিধা দেওয়া হবে, এবং ১০ বছর ধরে প্রায় ৭.৫ লক্ষ কোটি টাকা কঠোর পরিশ্রমী কৃষকদের দেওয়া হতে পারে। যখন কোনো সরকার দ্রুততার সঙ্গে বড়মাপের কাজ করে, সেটা পরিস্কার দেখা যায়। মহান সন্ত তিরুভাল্লুভার বলেছেন, ‘যখন বিরল সুযোগ আসে, সেই সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বিরল কাজ করো।’ ২০১৪ সালে ৩০ বছর পর একটি রাজনৈতিক দল আমাদের আইনসভায় সম্পূর্ণ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করে। এক্ষেত্রে জনসাধারণের সুস্পষ্ট বার্তা ছিল এমন এক সরকার তারা চায়, যা কঠোর এবং সাহসী পদক্ষেপ নিয়ে এগিয়ে যাবে। মানুষ বংশানুক্রমিক শাসন চায়নি, চিয়েছিল সততা। তারা ক্ষয় চায়নি, চেয়েছিল উন্নয়ন। মানুষ নীতিপঙ্গুতা চায়নি, চেয়েছিল অগ্রগতি। তারা প্রতিবন্ধকতা চায়নি, চেয়েছিল সুযোগ। মানুষ বন্ধ্যাত্ব চায়নি, চেয়েছিল নিরাপত্তা। মানুষ ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি চায়নি চেয়েছিল অন্তর্ভুক্ত আর্থিক বৃদ্ধি। ‘সবকা সাথ সবকা বিকাশ’-এর নীতি দ্বারা পরিচালিত হয়ে এবং ১৩০ কোটি ভারতীয়ের সক্রিয় অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এনডিএ সরকার জাতীয় স্বার্থে ঐতিহাসিক কয়েকটি সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমি কয়েকটি স্হানীয় এবং জাতীয় পর্যায়ের উদাহরণ তুলে ধরতে চাই। তামিলনাড়ু একটি উপকূলবর্তী রাজ্য যেখানে মৎস্য উৎপাদন ক্ষেত্র অত্যন্ত উৎসাহব্যঞ্জক। বহুমৎস্যজীবী ভাই ও বোনেরা এক্ষেত্রে কঠোর পরিশ্রম করে তাদের জীবিকা নির্বাহ করেন। এনডিএ সরকার এরই প্রেক্ষিতে মৎস্য বিষয়ক একটি নতুন দপ্তর চালু করেছে। পূর্বতন সরকারগুলি ভোট চাওয়ার জন্য আপনাদের কাছে আসতো কিন্তু মৎস্যজীবীদের জন্য কাজ করার ক্ষেত্রে তাদের দেখানোর মত তেমন কিছু নেই। আমাদের মৎস্যজীবী ও মহিলাদের কিষান ক্রেডিট কার্ডের সুবিধাদানের ব্যবস্হা চালু হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার তামিলনাড়ুতে গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার উপযোগী জলযান নির্মাণের জন্য ৩০০ কোটি টাকা দিয়েছে। মৎস্যজীবীরা সমুদ্রে কাজের সময় মহাকাশ থেকে সহায়তা পাচ্ছেন। আমরা একথা বুঝতে পেরেছি যে, আমাদের মৎস্যজীবী ভাই-বোনেদের আয় বাড়াতে হলে, মৎস্য সংগ্রহ সংক্রান্ত পরিকাঠামোর উন্নতি করতে হবে। রামনাথপুরম জেলার মুকায়ুর মৎস্যবন্দর এবং নাগাপট্টিনম জেলার পাম্পুহার সমুদ্র বন্দরের নির্মাণকাল প্রায় সম্পূর্ণ হয়ে এসেছে। ভারত সরকার মৎস্যজীবীদের নিরাপত্তা ও কল্যাণ বিষয়ে অত্যন্ত সংবেদনশীল। এনডিএ সরকার দেশের উপকূলবর্তী এলাকার জন্য যোগাযোগ ও উন্নয়ন সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে জোর দিয়ে কাজ করছে। এছাড়াও আমরা বন্দর উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক ধাপ এগিয়ে বন্দর কেন্দ্রিক উন্নয়নের জন্য কাজ শুরু করেছি। আরও নতুন নতুন বন্দর গড়ে তোলা হচ্ছে। পুরনো বন্দরগুলির কার্যক্ষমতা ও দক্ষতা বাড়ানোর উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। সাগরমালা প্রকল্পও আমাদের স্বপ্ন পূরণের অঙ্গ। শুধুমাত্র বর্তমানের প্রয়োজন মেটানোই নয়, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের প্রয়োজনের কথা ভেবেও রূপায়ণ করা হচ্ছে এই প্রকল্পটি। এবার আমির প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা প্রসঙ্গে কিছু বলতে চাই। আমাদের প্রাক্তন সেনাকর্মীদের আর্শিবাদে আমরা ‘এক পদ এক পেনশন’এর সিদ্ধান্ত রূপায়ণ করেছি। এই কাজটিই করার প্রয়োজন ছিল। যারা বহু বছর ধরে দেশ শাসন করেছে, তাঁরা কখনই এক পদ এক পেনশন’ নিয়ে কোন চিন্তাভাবনাই করেনি। ভারত বহু বছর ধরে সন্ত্রাসবাদের সমস্যার মুখোমুখি হয়ে আছে। কিন্তু আগের থেকে বড় পার্থক্য হচ্ছে, সন্ত্রাসের সামনে ভারত এখন আর অসহায় নয়। ২০০৪ থেকে ২০১৪ পর্যন্ত বেশ কয়েকবার আমাদের দেশে সন্ত্রাসবাদী হামলা হয়েছে। আজ আমরা সংবাদপত্রের কথায়- সশস্ত্র বাহিনীকে তাদের ইচ্ছামতো কাজের পূর্ণ স্বাধীনতা দিয়েছি। এ এক এমন ভারত, যে সন্ত্রাসবাদীদের কাজের ফলে ক্ষয়ক্ষতি সুদ সহ ফিরিয়ে দেবে। গত কয়েকদিনের ঘটনাবলী থেকে এটা পরিস্কার হয়েছে যে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর ক্ষমতা কোন পর্যায়ে পৌঁছেছে। এইসব ঘটনা সমগ্র জাতিকে একত্রিত করে তুলেছে। অত্যন্ত দুঃখের বিষয়, হাতে গোনা কয়েকটি রাজনৈতিক দল মোদীর প্রতি ঘৃণা বশতঃ, এমনকি ভারতকেও ঘৃণা করতে শুরু করেছে। অতএব এটা আশ্চর্যের নয় যে যখন সমগ্র জাতি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে সমর্থন করছে তখন এইসব দল আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে সন্দেহের চোখে দেখছে। এরা হচ্ছে সেইসব মানুষ, যাদের কথায় পাকিস্তানের সুবিধা হচ্ছে এবং ভারতের ক্ষতি হচ্ছে। এরা হচ্ছে সেইসব মানুষ, যাদের বক্তব্য পাকিস্তানের আইনসভায় এবং সেদেশের রেডিও-য় ফলাও করে প্রচার করা হচ্ছে। আমি তাদের উদ্দেশে প্রশ্ন রাখতে চাই- আপনারা কি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে সমর্থন করেন, নাকি সন্দেহ করেন ? তাদের বলে দেওয়া দরকার যে তারা কি আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর কাজে আস্হা রাখে, নাকি আমাদের দেশের মাটিতে সন্ত্রাসবাদের সমর্থনকারীদের প্রতি আস্হা রাখে ? আপনাদের নিজস্ব রাজনীতিকে শক্তিশালী করার জন্য অনুগ্রহ করে ভারতকে দুর্বল করার কাজ বন্ধ করুন। প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তার ক্ষেত্রে আমরা প্রথমেই ভারতীয় এবং শেষেও একমাত্র ভারতীয়। আপনাদের রাজনীতি অপেক্ষা করতে পারে, কারণ আমাদের দেশের নিরাপত্তা নিয়ে কথা হচ্ছে। এবার একটু দূর্নীতি এবং কালোটাকা নিয়ে কথা বলা যাক। ভারত এমন প্রধানমন্ত্রীকে দেখেছে, যিনি বলেছেন- প্রতি ১ টাকায় মাত্র ১৫ পয়সা দরিদ্র্য মানুষের কাছে পৌঁছায়। ভারত এমন উদ্ধত কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর কথা শুনেছে, যিনি বলেছেন-লক্ষ টাকার কেলেঙ্কারিতে ‘ক্ষতির পরিমাণ শূন্য’। কিছু মানুষ বলেন দূর্নীতি জীবনের অঙ্গ। একথা তাঁরা মানতে পারেন, কিন্তু আমি কখনই মানতে পারি না। এনডিএ সরকার দূর্নীতির বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নিয়েছে। দূর্নীতিগ্রস্হদের এখন তাদের কাজের জন্য কৈফিয়ত দিতে হবে। যখন আমরা দূর্নীতির বিরুদ্ধে কঠিন, কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি, একইসঙ্গে আমরা সৎকরদাতাদের পুরস্কৃত করার ব্যবস্হাও নিয়েছি। ঠিক একমাস আগে বাজেটের সময় ঘোষনা করা হয়েছিল যে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়ের জন্য কোনও আয়কর দিতে হবেনা। যারা দীর্ঘ সময় ধরে ভারতকে শাসন করে গেছে, তারা কি মধ্যবিত্তের জন্য চিন্তাভাবনা করেছে, অথবা তাদের জন্য কর ছাড়ের ব্যবস্হা করেছে ? বহু বছর ধরে কংগ্রেস এমন এক অর্থনৈতিক সংস্কৃতিকে তুলে ধরেছে, যাতে বৃহৎ বংশগুলির বন্ধু ও পরিবারের সদস্যরাই কেবলমাত্র উপকৃত হোত। সাধারণ মানুষের জন্য কোনও সুবিধা অথবা অর্থনৈতিক উন্নতির ব্যবস্হা ছিলনা। যদি কেউ কংগ্রেসের এই অর্থনৈতিক সংস্কৃতির বিরুদ্ধে কথা বলে থাকেন, তিনি হলেন তামিলনাড়ুর বিখ্যাত সন্তান সি রাজাগোপালাচারি। আমরা সংস্কারমুখী এবং জনবান্ধব এক অর্থনীতি সৃষ্টি করে, রাজাজীর স্বপ্ন পূরণের চেষ্টা করছি। ‘সহজে ব্যবসার সুবিধা’ বিষয়ক সূচকে ভারতের স্হান ৬৫ ধাপ এগিয়েছে। ৪ বছর আগে আমরা এই সূচকে ১৪২তম স্হানে ছিলাম, বর্তমানে আমরা ৭৭তম স্হানে উঠে এসেছি। গত বছর অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পক্ষেত্রের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার একগুচ্ছ সুযোগ-সুবিধার কথা ঘোষণা করেছে। বর্তমানে মাত্র ৫৯ মিনিটের মধ্যে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ পাওয়া সম্ভব হচ্ছে। এটি এমনকি এখান থেকে চেন্নাই পৌঁছানোর জন্য সময়ের থেকেও দ্রুতগামী। আমরা ভারতের যুব সম্প্রদায় ও তাদের প্রতিভার ওপর আস্হাশীল। এই কারণেই মুদ্রা যোজনার মতো কর্মসূচির সূচনা করে যুব ভারতের উদ্যোগের ধারণা যাতে ডানা মেলতে পারে তার ব্যবস্হা করেছে। মুদ্রা যোজনার আওতায় ১৫ কোটি মানুষ ইতিমধ্যেই ৭ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি ঋণ পেয়েছে। এই যোজনার আওতায় তামিলনাড়ু অন্যতম শীর্ষস্হানীয় রাজ্য। আমাদের বিরোধীদের সামাজিক ন্যায়ের প্রতি কোনরূপ দায়বদ্ধতা নেই। কংগ্রেসের শাসনকালেই দলিত সম্প্রদায়ের বিরুদ্ধে সবচেয়ে নৃশংস অত্যাচার হয়েছে। কংগ্রেসই ডঃ বালাসাহেব আম্বেদকরকে একবার নয়, দু-দুবার হারানোর ব্যবস্হা করেছে। ৪০ বছর ধরে কংগ্রেস ডঃ আম্বেদকরকে ভারতরত্ন দেয়নি, এমনকি তাঁর প্রতিকৃতি সংসদের সেন্ট্রাল হলে রাখার ব্যবস্হা করেনি। বিজেপির সমর্থনে অ-কংগ্রেসী সরকার-ই এই কাজ করেছে। বর্তমান এনডিএ সরকার তপশীলি জাতি-উপজাতি আইনে কঠোরতম সংশোধনের উদ্যোগ নিয়েছে। অর্থনৈতিক এবং সামাজিক ন্যায় আমাদের কাছে এক বিশ্বাসের বস্তু, ভোটে জেতার জন্য কোনও শ্লোগান নয়। ২০১৯এর লোকসভা নির্বাচনের দুটি পৃথক ভাগ রয়েছে। আমাদের দিকটি শক্তি এবং স্হিতিশীলতার স্বপ্ন দেখায়। অন্যদিকে বিরোধীদের দিকটি দূর্বলতা এবং পরাজয়ের সম্ভাবনার কথা বলে। আমাদের নেতৃত্বের কর্মসংস্কৃতি সারা ভারত জুড়ে সুবিদিত। বিরোধীদের নেতৃত্বে রয়েছে এক ধরনের বিভ্রান্তি। দেশের পরবর্তী নেতা হিসেবে বিরোধীরা কোনও নাম এখনও পর্যন্ত দিতে পারেনি। ভারতের বিকাশের জন্য তাদের কোনও লক্ষ্য বা স্বপ্ন নেই। রেকর্ড পরিমানে দুর্নীতি থেকে বিরত রাখার জন্য তাদের কোনও লজ্জা নেই। মন্ত্রী পদের জন্য এমনকি টেলিফোনে দর কষাকষি পর্যন্ত হয়েছিল। ‘মহা মিলাবট’ বা মহাভেজাল সরকার ব্যক্তিগত অহংকারের বশবর্তী হয়ে কাজ করবে এবং বংশানুক্রমিক উচ্চাকাঙ্খা মেটানোর উদ্যোগ নেবে। আমার একমাত্র পরিবার হচ্ছে, ১৩০ কোটি ভারতীয়। আমি তাদের জন্যই বেঁচে থাকবো, আবার তাদের জন্যই মৃত্যু বরণ করবো। আমি কোনও বংশানুক্রমিক শাসনকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে জনজীবনে আসিনি। আমি ভারতের বৃদ্ধির জন্য যতদূর পারি কাজ করার উদ্দেশ্যে এখানে এসেছি। আমি দরিদ্র্যদের মধ্যে দরিদ্র্যতম মানুষের স্বপ্ন পূরণের এক ভারত গড়ে তোলার জন্য আপনাদের জন্য সমর্থন এবং আর্শিবাদ প্রার্থনা করি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার তেল আভিভে আয়োজিতএক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন ইজরায়েলে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের উদ্দেশে।তিনি তাঁর ভাষণের সূচনায় বলেন যে ভারতের স্বাধীনতার পর দীর্ঘ ৭০ বছর কেটে গেলেও এরআগে আর কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ইজরায়েল সফরে আসেন নি। সেই অর্থে তিনিই হলেনপ্রথম একজন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী যিনি এই প্রথম ভারতের প্রতিনিধিত্ব করছেন এইদেশটিতে। ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীমিস্টার বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুকে তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানান তাঁর এই সফরকালেতাঁকে উষ্ণ আন্তরিকতার সঙ্গে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানানোর জন্য। কথিত আছে যে ত্রয়োদশশতাব্দীতে ভারতীয় সুফিসন্ত বাবা ফরিদ ইজরায়েল এসে একটি গুহার মধ্যে ধ্যানমগ্ন হয়েপড়েন। ভারত ও ইজরায়েলের পারস্পরিকসম্পর্ককে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য মৈত্রী এবং আস্হার এক নিবিড় সম্পর্ক বলে বর্ণনা করেনভারতের প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে উৎসব-পার্বণের দিক থেকেওপ্রচুর মিল ও সাদৃশ্য রয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন হোলি ও পুরিম এবংদিওয়ালি ও হানুক্ষার কথা। ইজরায়েলের প্রযুক্তিগত বিকাশও অগ্রগতির বিশেষ সাফল্যের কথা তুলে ধরে শ্রী মোদী বলেন, এই দেশের রয়েছে সাহসিকতা,বীরত্ব এবং আত্মবিসর্জনের দীর্ঘ ঐতিহ্য। প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে হাইফার মুক্তিসংগ্রামে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন ভারতীয় সেনারা। অন্যদিকে ভারত ওইজরায়েল দুটি দেশেই প্রচুর অবদান রয়েছে ভারতীয় এবং ইহুদি সম্প্রদায়গুলির। সাম্প্রতিক অতীতে ভারতে যেসংস্কার প্রচেষ্টার কাজ শুরু হয়েছে তার একটি রূপরেখাও তাঁর ভাষণে এদিন তুলে ধরেনপ্রধানমন্ত্রী। তিনি উল্লেখ করেন পণ্য ও পরিষেবা কর অর্থাৎ জিএসটি, প্রাকৃতিকসহায়-সম্পদের সুষ্ঠু বন্টন, ব্যাঙ্ক ও বিমাক্ষেত্রে সংস্কারমুখি উদ্যোগ এবং দক্ষতাবিকাশ সহ বিভিন্ন কর্মসূচির কথা। তিনি জানান যে ভারতে কৃষকদের আয় ও উপার্জন আগামী২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুণ করে তোলার উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তাঁর সরকার। শ্রী মোদী জানান,ইজরায়েলে স্হাপন করা হবে একটি ভারতীয় সাংস্কৃতিক কেন্দ্র। সেখানে সমাবেত শ্রমিকদের উদ্দেশে তিনি বলেন, দোহায় পৌঁছনোর পর তাঁর প্রথম কাজই ছিল ওঁদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওঁরা যেসব সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছেন, সে সম্পর্কে তিনি অবহিত আছেন এবং যখনই কাতারের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে কথা হয়, তখনই তিনি এই বিষয়গুলি উত্থাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রমিকদের সঙ্গে আলাপচারিতার আগে ঐ নির্মাণস্থলেই একটি চিকিৎসা শিবির অল্প সময়ের জন্য ঘুরে দেখেন এবং সেখানে চিকিৎসারত ডাক্তারদের কাজের প্রশংসা করেন। নৌ-সচেতনতার প্রসার সম্পর্কে এ বছরের ১০ মার্চ ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিটি নিয়ে আজ আলোচনা হয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। নৌ-সংক্রান্ত কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে এই চুক্তির আওতায় পরস্পরের মধ্যে পরিসংখ্যানগত তথ্য ও পরিষেবা বিনিময় করবে ভারত ও ফ্রান্স। বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের কাজ ৩৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করা হবে। ভারত-রাশিয়া : পরিবর্তনশীল বিশ্বে এক স্থায়ী অংশীদারিত্ব 1. চৌঠা এবং ৫ই অক্টোবর নতুন দিল্লীতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং রুশ ফেডারেশনের রাষ্ট্রপতি শ্রী ভ্লাদিমির পুতিন দু’দেশের মধ্যে ১৯তম বার্ষিক দ্বিপাক্ষিক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হন। ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতার বিষয়টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্প্রসারিত হয়েছে এবং রাজনৈতিক এবং কৌশলগত সহযোগিতা, সামরিক এবং প্রতিরক্ষা সহযোগিতা, অর্থনীতি, শক্তি, শিল্প, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, সংস্কৃতি এবং মানবিক সহযোগিতার বিষয়টিও এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। সোচি শীর্ষ বৈঠক ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতা এবং আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে একটি বহু মেরুসম্পন্ন বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে এক গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ। উভয় দেশ নিয়মিত ভিত্তিতে এই ধরণের অনানুষ্ঠানিক বৈঠক এবং সর্বস্তরে কৌশলগত যোগাযোগ রক্ষা করে চলার বিষয়ে একমত হয়। 3. ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে একটি বিশেষ এবং সুবিধাপ্রাপ্ত কৌশলগত অংশীদারিত্ব বজায় রাখার ক্ষেত্রে তাদের অঙ্গীকারের প্রতি পুনরায় দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করে। তারা ঘোষণা করে যে তাদের সম্পর্ক বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার পক্ষে এক গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং বিশ্বের মধ্যে অন্যতম প্রধান শক্তি হিসাবে বিশ্বের শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে যৌথ দায়িত্ব পালনে উভয় দেশের ভূমিকা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। 4. উভয় দেশই গভীর আস্থার ভিত্তিতে দাঁড়িয়ে থাকা সম্পর্ক এবং পারস্পরিক বিশ্বাস, শ্রদ্ধা এবং একে অপরের অবস্থান বিষয়ে গভীর সমঝোতা বিষয়ে তারা ঐকমত্য প্রকাশ করে। ভারত ও রাশিয়া বহু সাংস্কৃতিক, বহু ভাষিক এবং বহু ধর্মভিত্তিক সমাজ হিসেবে আধুনিক সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় দু’দেশের সভ্যতাকেন্দ্রিক জ্ঞানকে কাজে লাগানোর বিষয়ে দৃঢ় আস্থা ব্যক্ত করে। উভয় দেশ আরও বেশি যোগাযোগ সম্পন্ন ও বৈচিত্র্যপূর্ণ বিশ্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে অবদান রাখার বিষয়ে তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে। 5. আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে উত্তেজনা কমানোর লক্ষ্যে কাজ করার জন্য বিশ্বের সমস্ত রাষ্ট্রের প্রতি আহ্বান জানিয়ে উভয় দেশ সহিষ্ণুতা, সহযোগিতা, স্বচ্ছতা এবং আন্তঃরাষ্ট্রিক সম্পর্কে খোলামেলা দৃষ্টিভঙ্গিতে কাজ করার বিষয়ে ঐকমত্য প্রকাশ করেছে। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ ও প্রাথমিক চ্যালেঞ্জ হিসেবে দ্রুত পরিবেশ-বান্ধব সুষম অর্থনৈতিক উন্নয়ন নিশ্চিত করা, দারিদ্র্য দূরীকরণ, রাষ্ট্রগুলির মধ্যে অসমতা কমানো এবং সব রাষ্ট্রের সমস্ত নাগরিকের জন্য ন্যূনতম স্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থাকে উভয় দেশই চিহ্নিত করেছে। এইসব লক্ষ্য অর্জনে ভারত এবং রাশিয়া একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার শপথ গ্রহণ করেছে। ২০১৭-১৮ বর্ষের মধ্যে উভয় দেশের বৈদেশিক বিষয় সংক্রান্ত আলোচনা প্রোটোকলের সফর রূপায়ণের প্রেক্ষিতে উভয় দেশ আরও পাঁচ বছরের জন্য (২০১৯ থেকে ২০২৩) এই আলোচনার সময়সীমা বাড়ানোর ব্যাপারে এবং একটি প্রোটোকল স্বাক্ষর করার বিষয়ে একমত হয়েছে। 8. ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের ৭০তম বর্ষপূর্তি অনুষ্ঠানের সফল সমাপনের মধ্য দিয়ে উভয় দেশের মানুষের মধ্যে উৎসাহ এবং মানুষে মানুষে সম্পর্ক আরও সংহত হয়ে ওঠার বিষয়টি উভয় দেশ লক্ষ্য করেছে। ২০১৭-য় স্বাক্ষরিত চুক্তির ভিত্তিতে ২০১৭-২০১৯ সালের মধ্যে সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি রূপায়ণ বিষয়ে উভয় দেশই সন্তোষ ব্যক্ত করেছে। গত দু’বছরে উভয় দেশের মধ্যে পর্যটক যাতায়াতের হার বৃদ্ধিকেও উভয় পক্ষ স্বাগত জানিয়ে এই সদর্থক প্রবণতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতে একমত হয়েছে। ভারত ২০১৮-র ফিফা ফুটবল বিশ্বকাপ সফলভাবে আয়োজনের জন্য রাশিয়ার প্রশংসা করেছে। উভয় দেশ বেশ কয়েক দশক ধরে ভারত-রুশ সম্পর্কের উন্নয়নে ইনস্টিটিউট অফ ওরিয়েন্টাল স্টাডিজ ও রাশিয়া অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সের অবদানকে স্বীকৃতি জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী জানিয়েছেন যে এই ইনস্টিটিউট স্থাপনের ২০০ বছর পূর্তির অনুষ্ঠানকে সফল করে তুলতে ভারত বিশেষ অবদান রাখবে। 10. উভয় দেশ ২০২৫ সালের মধ্যে তিন হাজার কোটি মার্কিন ডলার পারস্পরিক বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছে এবং এই লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের কাজ যথাযথভাবে এগিয়ে চলায় উভয় দেশ সন্তোষ ব্যক্ত করেছে। তারা উল্লেখ করেছে, ২০১৭ সালে দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ২০ শতাংশেরও বেশি হারে বৃদ্ধি পেয়েছে এবং এই বাণিজ্যিক লেনদেনকে আরও বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য একমত পোষণ করেছে। উভয় দেশ নিজ নিজ দেশের জাতীয় মুদ্রায় দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যেতে তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে। 11. ভারতের নীতি আয়োগ এবং রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রকের মধ্যে কৌশলগত অর্থনৈতিক আলোচনার প্রথম বৈঠক ২০১৮-র শেষ দিকে রাশিয়ায় অনুষ্ঠিত হবে বলে উভয় দেশ স্থির করেছে। 13. দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্য অর্থনৈতিক সম্পর্কের উন্নয়ন এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি যৌথ কৌশল স্থির করতে যৌথ সমীক্ষা চালানোর সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে ভারতের পক্ষ থেকে ইন্ডিয়ান ইনস্টিটিউট অফ ফরেন ট্রেড এবং রাশিয়ার পক্ষ থেকে অল রাশিয়ান অ্যাকাডেমি অফ ফরেন ট্রেডকে মনোনীত করা হয়েছে। 14. রুশ বিনিয়োগকারীরা যাতে ভারতে বিনিয়োগ করতে পারেন, সেই লক্ষ্যে ‘ইনভেস্ট ইন্ডিয়া’ নামে সম্মেলনের কাজে সন্তোষ ব্যক্ত করেছে এবং ভারতীয় কোম্পানিগুলি যাতে রাশিয়ায় বিনিয়োগ করতে পারে সেই লক্ষ্যে রাশিয়ার অর্থনৈতিক উন্নয়ন মন্ত্রক কর্তৃক ‘সিঙ্গল উইন্ডো সার্ভিস’ চালু করার সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানানো হয়েছে। 16. উভয় দেশই খনি, ধাতব উৎপাদন, বিদ্যুৎ, তেল ও গ্যাস, রেল, ওষুধপত্র, তথ্যপ্রযুক্তি, রাসায়নিক দ্রব্য, পরিকাঠামো, অটোমোবাইল, অসামরিক পরিবহণ, মহাকাশ, জাহাজ নির্মাণ এবং বিভিন্ন ধরণের যন্ত্রাংশ উৎপাদনের মতো অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিনিয়োগ প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছে। উভয় দেশই রাশিয়ায় অ্যাডভান্সড ফার্মা কোম্পানি কর্তৃক ওষুধ কারখানা স্থাপনের সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে রাশিয়া থেকে সার আমদানি বৃদ্ধির করার আগ্রহ বিষয়ে ঐ দেশকে জানানো হয়েছে। উভয় দেশই অ্যালুমিনিয়াম ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। 17. ক্ষুদ্র শিল্পক্ষেত্রে ভারত ও রাশিয়া জাতীয় সংস্থার মধ্যে সমঝোতা স্বাক্ষরকে উভয় দেশ স্বাগত জানিয়েছে। 18. পরিকাঠামো উন্নয়নকে উভয় দেশের জাতীয় অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করে উভয় দেশই এই ক্ষেত্রটিতে সহযোগিতার বিপুল সুযোগ বিষয়ে একমত হয়েছে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে শিল্প করিডর পরিকাঠামোর ক্ষেত্রে ভারতকে উপগ্রহ-ভিত্তিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে কর সংগ্রহের প্রযুক্তি প্রদানের কথা বলা হয়েছে। ভারতের রেল মন্ত্রক ট্রেনগুলির গতি বৃদ্ধির যে প্রকল্প গ্রহণের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, তার আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক বিডিং-এর ক্ষেত্রে রাশিয়া অংশগ্রহণের আগ্রহ প্রকাশ করেছে। উভয় পক্ষই পরিবহণ, কর্মী প্রশিক্ষণ এবং আন্তর্জাতিক পরিবহণ করিডর প্রকল্প রূপায়ণে প্রযুক্তিগত সহায়তার মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতার ওপর গুরুত্ব দিয়েছে। এইসব ক্ষেত্রে কাজের জন্য উভয় দেশই ভারতের ভদোদরার ন্যাশনাল রেল অ্যান্ড ট্রান্সপোর্টেশন ইনস্টিটিউট এবং রাশিয়ার ইউনিভার্সিটি অফ ট্রান্সপোর্টের মধ্যে সহযোগিতা চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে একমত হয়েছে। 19. উভয় দেশই আন্তর্জাতিক পর্যায়ে উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডর উন্নয়নের মাধ্যমে যোগাযোগ বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। তবে এই ক্ষেত্রে কাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে হলে সংশ্লিষ্ট দেশগুলির সীমাশুল্ক কর্তৃপক্ষের মধ্যে বকেয়া বিষয়ে আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নিতে হবে, রেল এবং সড়ক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে হবে, দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে আলোচনার মাধ্যমে আর্থিক লেনদেনের উপযুক্ত ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে এবং অন্যান্য সহযোগী দেশগুলির সঙ্গে এ বিষয়ে আলোচনা চালিয়ে সমগ্র বিষয়টিকে চূড়ান্ত করতে হবে। ভারতের পক্ষ থেকে রাশিয়াকে আন্তর্জাতিক পণ্য পরিবহণ সংক্রান্ত সীমাশুল্ক চুক্তিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। উভয় দেশ এ বিষয়ে একটি মন্ত্রী পর্যায়ের সমন্বয় বৈঠক আয়োজনের ব্যাপারে একমত হয়েছে। 20. দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেনকে উৎসাহিত করতে উভয় দেশ, বাধ্যতামূলক পরিদর্শন / নিয়ন্ত্রণ সংক্রান্ত যে সব বিষয় কোন পণ্যদ্রব্যের আমদানি বা রপ্তানির সময় চালাতে হয়, তাতে বিলম্ব এড়াতে উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে একমত হয়েছে। 22. ভারত এবং রাশিয়ার মধ্যে পণ্যদ্রব্য পরিবহণের সুবিধার্থে সীমাশুল্ক সংক্রান্ত নিয়মকানুনের সরলীকরণের লক্ষ্যে ‘গ্রিন করিডর’ প্রকল্প চালু করার বিষয়ে উভয় দেশই একমত হয়েছে। পারস্পরিক বাণিজ্যি লেনদেন বৃদ্ধির লক্ষ্যে এটি এক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ বলে উভয় দেশ একমত হয়েছে। এই প্রকল্পটির সূচনা হওয়ার পর, উভয় দেশের সীমাশুল্ক প্রশাসন এক্ষেত্রে সহযোগিতাকে আরও প্রসারিত করার উদ্যোগ নেবে বলে স্থির হয়েছে। 23. উভয় দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্য শিল্পোদ্যোগ এবং সরকারি সংস্থাগুলির মধ্যে প্রত্যক্ষ যোগাযোগ আরও বৃদ্ধির লক্ষ্যে উভয় দেশ উদ্যোগ গ্রহণের বিষয়ে একমত হয়েছে। উভয় দেশই কৃষিক্ষেত্রকে সহযোগিতার এক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হিসেবে চিহ্নিত করেছে এবং দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রতিবন্ধকতাগুলি দূর করা, উৎপাদন বৃদ্ধি করা এবং কৃষি পণ্যের বাণিজ্যিক লেনদেন বাড়ানোর বিষয়ে একমত হয়েছে। রাশিয়ার দূরপ্রাচ্য অঞ্চলে ভারতীয় কোম্পানিগুলি কর্তৃক হীরক উৎপাদনের ক্ষেত্রে সাম্প্রতিক বিনিয়োগকেও উভয় দেশের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে। মূলবান ধাতু, খনিজ দ্রব্য এবং অন্যান্য প্রাকৃতিক সম্পদ, অরণ্য সম্পদের মতো ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ গড়ে তোলার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে উভয় দেশ একমত হয়েছে। 26. রাশিয়ার পক্ষ থেকে ভারতের বিভিন্ন কোম্পানির কাছে সে দেশের দূরপ্রাচ্য হিসেবে চিহ্নিত প্রদেশে বিনিয়োগের আহ্বান জানানো হয়েছে। রাশিয়ার দূরপ্রাচ্য সংস্থার একটি অফিস মুম্বাইতে খোলায় ভারতীয় কোম্পানিগুলির পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে। ২০১৮-র সেপ্টেম্বরে ব্লাদিভোস্টকে পূর্বাঞ্চলীয় অর্থনৈতিক ফোরামের বৈঠকে ভারতের শিল্পবাণিজ্য মন্ত্রী শ্রী সুরেশ প্রভুর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধিদল অংশগ্রহণ করেছে। অনুরূপভাবে, একটি উচ্চপর্যায়ের রাশিয়ার প্রতিনিধিদল সে দেশের দূরপ্রাচ্যে আরও বেশি করে ভারতীয় কোম্পানিগুলির বিনিয়োগকে উৎসাহিত করতে ভারতে রোড শো আয়োজন করবে বলে স্থির হয়েছে। 27. উভয় দেশই রেল, শক্তি এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে কোন তৃতীয় দেশে প্রযুক্তি ও সহায়সম্পদ-ভিত্তিক যৌথ প্রকল্প গড়ে তোলার বিষয়ে সক্রিয়ভাবে উদ্যোগ গ্রহণ করার লক্ষ্যে কাজ করার জন্য একমত হয়েছে। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি 29. মৌল এবং প্রায়োগিক ক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি যৌথ গবেষণার দশম বর্ষপূর্তি উদযাপনের সাফল্যে দু’দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিভাগের সহযোগিতায় উভয় পক্ষই সন্তোষ ব্যক্ত করেছে। দু’দেশের মধ্যে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি সুসংহত কর্মসূচিতে সহযোগিতাকে জোরদার করার বিষয়ে ঐকমত্য প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এই কর্মসূচিতে দু’দেশের গবেষণাগার, বিশ্ববিদ্যালয় ও বিজ্ঞান-প্রযুক্তি সংগঠনগুলির মধ্যে সহযোগিতা সংক্রান্ত একটি রূপরেখা প্রণয়নের বিষয়ে উভয় দেশ একমত হয়েছে। 30. দুই দেশই তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, বিশেষ করে বৈদ্যুতিন ব্যবস্থা নির্মাণ ও উৎপাদন, সফ্‌টওয়্যার উৎপাদন, সুপার কম্পিউটিং, ই-গভর্নেন্স, জনপরিষেবা ব্যবস্থা, নেটওয়ার্ক নিরাপত্তা, তথ্য এবং যোগাযোগ প্রযুক্তির ব্যবহারের নিরাপত্তা, আর্থিক প্রযুক্তি, ইন্টারনেট অফ থিঙ্গস, রেডিও ফ্রিকোয়েন্সি স্পেকট্রামের নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা প্রভৃতির মতো ক্ষেত্রে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধির বিষয়ে একমত হয়েছে। ব্রিক্‌স এবং আইটিইউ-এর মতো মঞ্চে দুই দেশ পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয়সাধনের বিষয়ে কাজ করার জন্য একমত হয়েছে। এই লক্ষ্যে উভয় দেশের স্টার্ট-আপ বিনিয়োগকারীর উদ্ভাবন সংস্থা এবং উদীয়মান উদ্যোগপতিদের নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার জন্য একটি অনলাইন পোর্টাল চালু করার সিদ্ধান্তকেও উভয় দেশ স্বাগত জানিয়েছে। 32. বহির্মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি এবং পারস্পরিক সুবিধার সহযোগিতার গুরুত্ব বিষয়ে উভয় দেশই জোর দিয়েছে এবং ভারতের আঞ্চলিক নেভিগেশন স্যাটেলাইট ব্যবস্থার গ্রাউন্ড স্টেশন মারফৎ তথ্য সংগ্রহের কাজকে স্বাগত জানানো হয়েছে। 33. মেরু অঞ্চলে উভয় দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট প্রকল্পে সহযোগিতার ক্ষেত্রে উভয় দেশই আগ্রহ প্রকাশ করেছে। কুমেরু অঞ্চলে দীর্ঘমেয়াদি সহযোগিতার কাজের অগ্রগতিতে ভারত এবং রাশিয়ার বিজ্ঞানীরা যে কাজ করেছেন, তাতে উভয় দেশই সন্তোষ ব্যক্ত করেছে। ছাত্র, গবেষক এবং শিক্ষকদের জন্য সফর বিনিময় এবং যৌথ উদ্যোগে বিজ্ঞান-ভিত্তিক এবং শিক্ষা সংক্রান্ত প্রকল্প রূপায়ণে যে বিপুল আগ্রহ সৃষ্টি হয়েছে, তাতে দুই দেশই সন্তোষ ব্যক্ত করেছে। 36. শক্তিক্ষেত্রে উভয় দেশের স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার সম্ভাবনা বিষয়ে উভয় দেশ আগ্রহ প্রকাশ করেছে এবং নিজ নিজ দেশের কোম্পানিগুলিকে শক্তিক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি চুক্তি, যৌথ উদ্যোগ এবং শক্তিসম্পদের পারস্পরিক অধিগ্রহণ ও তৃতীয় কোন দেশের সঙ্গে সম্ভাব্য সহযোগিতার বিষয় খতিয়ে দেখতে আহ্বান জানিয়েছে। ভ্যাঙ্কোর শক্তি প্লাস্টারে দু’দেশের কোম্পানিগুলির মধ্যে সার্বিক সহযোগিতার জন্য আলোচনা চূড়ান্ত করার লক্ষ্যে উদ্যোগকে উভয় দেশের পক্ষ থেকে স্বাগত জানানো হয়েছে। 39. উভয় দেশ, পিজেএসসি নোভাটেক এবং ভারতের শক্তি কোম্পানিগুলির মধ্যে সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে আলোচনাকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এলএনজি ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগে প্রকল্প রূপায়ণের প্রয়াসকে স্বাগত জানানো হয়েছে। 40. রাশিয়ার মেরু অঞ্চলে বিশেষ করে, পেচোরা এবং ওখটস্ক সাগরে যৌথ উদ্যোগে খনিজ তেল উত্তোলনের প্রকল্প বিষয়ে সহযোগিতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে দু’দেশের বিভিন্ন কোম্পানিগুলির মধ্যে আলোচনাকে উভয় দেশ স্বাগত জানিয়েছে। উভয় পক্ষই ভারতে রাশিয়া পরিকল্পিত নতুন পারমানবিক শক্তি উৎপাদন কেন্দ্র স্থাপন বিষয়ে আলাপ-আলোচনা, পারমানবিক যন্ত্রাংশের যৌথ উৎপাদন এবং তৃতীয় কোন দেশে এ বিষয়ে সহযোগিতাকে স্বাগত জানিয়েছে। সামরিক প্রযুক্তিগত সহযোগিতা উভয় দেশের সামরিক বাহিনীর মধ্যে প্রশিক্ষণ এবং বরিষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাদের সফর বিনিময়, কর্মীদের মধ্যে আলাপ-আলোচনা এবং যৌথ মহড়া প্রভৃতির ক্ষেত্রে সামরিক সহযোগিতার রূপরেখা এই ক্ষেত্রে সহযোগিতার পথকে আরও প্রশস্ত করেছে বলে উভয় দেশ মনে করে। রাশিয়ার পক্ষ থেকে ২০১৮-র আর্মি গেম্‌স, আর্মি, ২০১৮ এবং আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা সংক্রান্ত মস্কো সম্মেলনে ভারতের অংশগ্রহণকে সদর্থকভাবে স্বাগত জানানো হয়েছে। উভয় দেশই বাহিনীত্রয়ের যৌথ মহড়া ‘ইন্দ্র, ২০১৭’কে স্বাগত জানিয়েছে এবং ২০১৮-য় নৌ-সেনা, স্থলবাহিনী এবং বায়ুসেনার ‘ইন্দ্র’ পর্যায়ের যৌথ মহড়া চালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। 45. উভয় দেশই ‘এস-৪০০’ শ্রেণীর দূরপাল্লার ভূপৃষ্ঠ থেকে আকাশে ক্ষেপণযোগ্য ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা ভারতকে সরবরাহ করার জন্য চুক্তি সম্পাদনকে স্বাগত জানিয়েছে। সামরিক প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতিতে উভয় দেশ সন্তোষ ব্যক্ত করেছে এবং দু’দেশের মধ্যে সামরিক যন্ত্রাংশ উৎপাদন ও এ বিষয়ে গবেষণাকে স্বীকৃতি জানিয়েছে। ভারত সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতিকে উৎসাহ দিতে সামরিক শিল্পক্ষেত্রে এই উদ্যোগ বিশেষ ভূমিকা নেবে বলে উভয় দেশ একমত হয়েছে। আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলি রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের প্রস্তাব অনুসারে এবং জেনেভা ও আস্তানা আলোচনায় গৃহীত পদক্ষেপ অনুসারে, কাজ চালানোর জন্য আন্তর্জাতিক গোষ্ঠীর কাছে আহ্বান জানিয়েছে। সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের কাছে একটি শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল এবং সার্বভৌম সিরিয়া গড়ে তোলার লক্ষ্যে এবং সিরিয়ার গোষ্ঠীগুলির মধ্যে কোনরকম শর্ত ছাড়াই এবং বহিরাগত হস্তক্ষেপ ছাড়াই আলোচনা প্রক্রিয়ার প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করা হয়েছে। সিরিয়ার মানুষের দীর্ঘমেয়াদি ভোগান্তি দূর করতে মানবিক সহায়তার কথা এবং জরুরি ভিত্তিতে সে দেশের পুনর্গঠনের প্রয়োজনীয়তা, গৃহযুদ্ধের ফলে উৎখাত হওয়া শরণার্থীদের দেশে ফেরানো এবং দেশের অভ্যন্তরে গৃহচ্যুত মানুষের পুনর্বাসনের লক্ষ্যে উদ্যোগ জোরদার করার আহ্বান জানানো হয়েছে। ইরানের পারমানবিক কর্মসূচি বিষয়ে সমস্ত ইস্যু শান্তিপূর্ণভাবে আলোচনার মাধ্যমে মিটিয়ে ফেলার আহ্বানও উভয় দেশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে। 51. উভয় দেশ কোরীয় উপদ্বীপে সদর্থক ঘটনাগুলিকে স্বাগত জানিয়েছে এবং এই অঞ্চলে কূটনৈতিক আলোচনার মাধ্যমে স্থায়ী শান্তি ও স্থিতিশীলতা আনার উদ্যোগের প্রতি দুই দেশ তাদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে। কিন্তু কোরীয় উপদ্বীপের সমস্যার সমাধানের পাশাপাশি এই সমস্যার সঙ্গে যুক্ত পরমাণু শক্তির প্রসারের বিষয়টিকেও যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া উচিৎ বলে উভয় দেশ অভিমত প্রকাশ করেছে। 52. উভয় দেশই বহির্মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা বিষয়ে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেছে এবং বহির্মহাকাশকে সামরিক সংঘাতের মঞ্চে পরিণত না করার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের কাছে আহ্বান জানিয়েছে। দুটি দেশই বলেছে বহির্মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতার সম্ভাবনা বন্ধ করার মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক বড় বিপদ এড়িয়ে চলা সম্ভব। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সরকারি বিশেষজ্ঞদের গোষ্ঠীর প্রথম অধিবেশনে বহির্মহাকাশে অস্ত্র প্রতিযোগিতা বন্ধে একটি আইনগতভাবে বাধ্যতামূলক চুক্তি বা ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়ে যে আলোচনা হয়েছে, উভয় দেশ তাকে স্বাগত জানিয়েছে। এই ক্ষেত্রে বিভিন্ন দেশের কাজের মধ্যে স্বচ্ছতা এবং আস্থা বর্ধক উদ্যোগ বিশেষ কার্যকর হতে পারে বলে উভয় দেশ অভিমত ব্যক্ত করেছে। 54. উভয় দেশ যে কোন ধরণের সন্ত্রাসবাদের নিন্দা করেছে এবং আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ প্রতিরোধে কোনরকম দ্বিমুখী নীতি ছাড়াই সম্মিলিতভাবে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের আহ্বান জানিয়েছে। উভয় দেশই সন্ত্রাসবাদীদের নেটওয়ার্ক ধ্বংস করা, তাদের আয়ের পথ বন্ধ করা, অস্ত্র এবং অন্যান্য সরবরাহ চ্যানেল বন্ধ করা, তাদের আদর্শ, প্রচার ও নিয়োগ বন্ধ করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার কথা বলেছে। 55. উভয় দেশ আন্তর্জাতিক আইনের নীতির প্রতি তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করে আন্তর্জাতিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে রাষ্ট্রসঙ্ঘের কেন্দ্রীয় ভূমিকার ওপর বিশেষ জোর দিয়েছে। উভয় দেশই আন্তর্জাতিক আইনকানুনের ক্ষেত্রে আস্থার বিষয়টিকে সাধারণ নীতি হিসেবে গ্রহণ করে দ্বিচারিতা এড়িয়ে এক রাষ্ট্রের ওপর অন্য রাষ্ট্রের দায় চাপিয়ে এবং একতরফাভাবে আন্তর্জাতিক আইন বিরোধী শক্তি প্রয়োগ করে যে কোন ধরণের কাজের বিরোধীতা করেছে। উভয় দেশই সংশ্লিষ্ট সকলের স্বার্থের কথা মাথায় রেখে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ-ভিত্তিক এক বিশ্ব ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। 56. উভয় দেশ রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রয়োজনীয়তার ওপর সংস্কারে জোর দিয়েছে এবং বর্তমান বিশ্বের চ্যালেঞ্জগুলি মোকাবিলায় অতি দ্রুত এই কাজ সম্পন্ন করার আহ্বান জানিয়েছে। রাশিয়া রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের প্রতি তাদের সমর্থন পুনরায় ব্যক্ত করেছে। উভয় দেশই আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে শান্তি, নিরাপত্তা এবং সমতার ভিত্তিতে উন্নয়ন সুনিশ্চিত করতে একযোগে কাজ করতে সম্মত হয়েছে এবং বিশ্ব ব্যবস্থায় স্থিতিশীলতা আনার চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় তাদের কাজে সমন্বয়সাধনের কথা বলেছে। এক্ষেত্রে রাষ্ট্রসঙ্ঘের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা, বিশেষ করে সুষম উন্নয়ন সংক্রান্ত উচ্চপর্যায়ের রাজনৈতিক মঞ্চ, ২০৩০-এর সুষম উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা বিষয়ে কাজের সমন্বয় এবং পর্যালোচনায় বিশেষ ভূমিকা নিতে পারে বলে উভয় দেশ অভিমত ব্যক্ত করেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের উন্নয়ন ব্যবস্থার সংস্কার এবং যথা সময়ে প্রতিশ্রুতিমতো প্রদেয় আর্থিক সহায়তা প্রদান করে উন্নয়নশীল দেশগুলির উন্নয়নের জন্য প্রয়োজনীয় সহায়সম্পদের ব্যবস্থা করার আহ্বান জানিয়েছে। 58. উভয় দেশ পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়ন এবং কম কার্বন নির্গমনের অর্থনীতিকে তুলে ধরতে তাদের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেছে। সুষম উন্নয়ন এবং দারিদ্র্য দূরীকরণের প্রেক্ষিতে তারা প্যারিস চুক্তির সম্পূর্ণ রূপায়ণের ওপর জোর দিয়েছে। এক্ষেত্রে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত রাষ্ট্রসঙ্ঘের ফ্রেমওয়ার্ক কনভেনশনে যে অভিন্ন কিন্তু স্বতন্ত্র দায়িত্ব রয়েছে, তা পালনের কথা বলেছে এবং উন্নত দেশগুলিকে আর্থিক, প্রযুক্তিগত এবং অন্যান্য সহায়তা দিয়ে এই কাজে সাহায্য করার আহ্বান জানিয়েছে। 59. উভয় পক্ষই বিশ্বব্যাপী পরমাণু শক্তির প্রসার রোধ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করার ব্যাপারে তাদের অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। রাশিয়া, ‘পারমানবিক সরঞ্জাম সরবরাহ গোষ্ঠী’তে ভারতের সদস্যপদের সমর্থন ব্যক্ত করেছে। এর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৭৩তম সাধারণ অধিবেশনে এ বিষয়ে একটি প্রস্তাব গ্রহণের ওপর উভয় দেশ জোর দিয়েছে। দুই দেশ এক্ষেত্রে সহযোগিতার কাঠামো গড়ে তুলতে ব্রিক্‌স দেশগুলির নিজেদের মধ্যে আলাপ-আলোচনার কথা বলেছে এবং এ বিষয়ে সহযোগিতা সংক্রান্ত ব্রিক্‌সভুক্ত আন্তঃসরকারি চুক্তি সম্পাদনের প্রয়োজনীয়তা বিষয়ে অভিমত প্রকাশ করেছে। 62. উভয় দেশ এশিয়া, প্রশান্ত মহাসাগর এবং ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে সমতার ভিত্তিতে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে একটি আঞ্চলিক নিরাপত্তা কাঠামো প্রতিষ্ঠার প্রস্তাবের প্রতি সহমত পোষণ করেছে। পূর্ব এশিয়া শিখর বৈঠক এবং অন্যান্য আঞ্চলিক মঞ্চের মধ্যে এই লক্ষ্যে বহুপাক্ষিক আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ওপর উভয় দেশই গুরুত্ব আরোপ করেছে। দুটি দেশই মনে করে যে আঞ্চলিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করার যে কোন ধরণের উদ্যোগকে বহুপাক্ষিকতা, স্বচ্ছতা, অন্তর্ভুক্ততা, পারস্পরিক আস্থা এবং সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির লক্ষ্যে সমন্বিত প্রচেষ্টার ভিত্তিতে চালিয়ে যাওয়া দরকার। তবে এই কাজ যেন কোন দেশের বিরুদ্ধে পরিচালিত না হয়, এই প্রসঙ্গে উভয় দেশ ২০১৮-র ২৪শে আগস্ট মস্কোয় রাশিয়ার উপ-বিদেশমন্ত্রী ইগর মরগুলভ এবং ভারতের বিদেশ সচিব বিজয় গোখেলের মধ্যে যে গঠনমূলক আলোচনা হয়েছে, তাকে স্বাগত জানিয়েছে। 63. উভয় দেশ ব্রিক্‌স, জি-২০, এসসিও, আরআইসি, ইস্ট এশিয়া সামিটের মতো বহুপাক্ষিক আঞ্চলিক মঞ্চে তাদের অবস্থান ও কাজের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সমন্বয় বজায় রাখার প্রতি অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছে। ভারতের পক্ষ থেকে ইউরেশিয়ান ইকনমিক ইউনিয়নের সঙ্গে সহযোগিতা আরও ব্যাপকতর করার আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে। 64. উভয় দেশই ২০১৮-র জুন মাসে ক্যুইনডাওতে সাংহাই সহযোগিতা সংগঠনের রাষ্ট্রপ্রধানদের বৈঠকে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর অংশগ্রহণকে ঐ সংগঠনের পূর্ণ সদস্য হিসেবে ভারতের সফল অন্তর্ভুক্তি হিসেবে দেখতে চায়। রাশিয়ার পক্ষ থেকে সন্ত্রাসবাদ বিরোধী সামরিক মহড়া ‘পিস মিশন, ২০১৮’-এ অংশগ্রহণকে স্বাগত জানানো হয়েছে। উভয় দেশ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সাংহাই সহযোগিতা সংগঠনের ক্রমবর্ধমান ভূমিকার প্রতি সহমত পোষণ করে রাষ্ট্রসঙ্ঘ এবং অন্যান্য আন্তর্জাতিক ও আঞ্চলিক সংগঠনেও সহযোগিতার কথা বলেছে। এছাড়া, এই সংগঠনের মধ্যে সাংস্কৃতিক এবং মানবিক সংযোগকে গভীরতর করার বিষয়ে উভয় দেশ একমত হয়েছে। 65. উভয় দেশ একটি উন্মুক্ত, অন্তর্ভুক্তিমূলক, স্বচ্ছ, বৈষম্যহীন ও আইন-ভিত্তিক বহুপাক্ষিক বাণিজ্যিক ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করা এবং আন্তর্জাতিক বাণিজ্য সম্পর্কের বিচ্ছিন্নতা প্রতিরোধ করা এবং বাণিজ্যিক লেনদেনের ক্ষেত্রে যে কোন ধরণের রক্ষণশীলতার বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছে। 67. উভয় দেশই ভারত ও রাশিয়ার সম্পর্ক, অভিন্ন স্বার্থ এবং বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক ইস্যুতে অভিন্ন অবস্থান গ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছে এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সমন্বয় এবং বিশেষ ও সুবিধাপ্রাপ্ত অংশীদারিত্বকে আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়ে উভয় দেশের স্বার্থকে সংহত করায় একমত হয়েছে। 68. রাশিয়ার রাষ্ট্রপতি ভ্লাদিমির পুতিন ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে আতিথেয়তার জন্য ধন্যবাদ জানিয়েছেন এবং ২০১৯-এ দু’দেশের মধ্যে ২০তম বার্ষিক শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণের জন্য আমন্ত্রণ জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি গোয়ার শ্যামা মুখার্জিস্টেডিয়ামে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে রবিবার মোপা বিমানবন্দর এবং তুয়াম-এর ইলেকট্রনিকসিটি’-র শিলান্যাস করলেন। তাছাড়া প্রধানমন্ত্রী ‘মাইন কাউন্টার মেজার ভেসেল’নির্মাণের পরিকাঠামো এবং পাঁচটি ‘কোস্ট গার্ড অফসোর পেট্রোল ভেসেল’ নির্মাণসূচনারও উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভাষণের শুরুতে কয়েক সপ্তাহ আগেগোয়ায় অনুষ্ঠিত ব্রিকস শিখর সম্মেলন সফলভাবে আয়োজিত করায় ভারতকে সক্ষম করে তোলায়যারা কাজ করেছেন, তাদেরকে অভিনন্দিত করেন। তাছাড়া গোয়া রাজ্যের অগ্রগতিরও তিনি প্রশংসাকরেন। ইলেকট্রিনিক সিটিপ্রকল্পের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ডিজিট্যাল পদ্ধতিতে প্রশিক্ষিত, আধুনিকও যুবসমাজ পরিচালিত গোয়া এখন তৈরি হচ্ছে, যার ক্ষমতা রয়েছে ভারতকে রূপান্তরিতকরার। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয়সরকার কালো টাকার ভীতিকে পরাজিত করে দেশের সৎ নাগরিকদের সহায়তা করার জন্য একটিবিশেষ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। এই টাকা বাতিলের প্রক্রিয়া সফল করার বিষয়টি সুনিশ্চিতকরার জন্য যারা কাজ করে চলেছেন, প্রধানমন্ত্রী তাদের সবাইকে ধন্যবাদ জানান। তিনিবলেন, এক্ষেত্রে সমস্যা ও যন্ত্রণা তিনিও অনুভব করছেন এবং এই পদক্ষেপগুলি যে নেওয়াহয়েছে তা কোনো গর্বোদ্ধত প্রকাশ নয়। তিনি বলেন, তিনি দারিদ্র্য প্রত্যক্ষ করেছেনএবং মানুষের সমস্যাগুলি অনুধাবন করছেন। তিনি স্মরন করেন যে, ২০১৪ সালে মানুষ দেশকে দুর্নীতিমুক্তকরার জন্য ভোট দিয়েছিলেন। তিনি কালো টাকা নির্মূলে কেন্দ্রীয় সরকার যেসব পদক্ষেপগ্রহণ করেছে, তার উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে যদি টাকা লুট হয় এবং তা ভারতথেকে বেরিয়ে যায়, তাহলে তা খুঁজে বের করা আমাদের দায়িত্ব। প্রশাসনের বিভিন্ন ক্ষেত্রের রূপান্তরমুখী পরিবর্তনের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন মন্ত্রকের সচিবদের যে নতুন নতুন ধারণা ও প্রস্তাব উদ্ভাবনের আহ্বান জানিয়েছিলেন, তারই ফলশ্রুতি হিসেবে সচিবদের প্রথম গোষ্ঠী (মোট আটটি গোষ্ঠীর মধ্যে) শক্তি সংরক্ষণ ও সুদক্ষ উপায়ে শক্তি ব্যবহার প্রসঙ্গে তাঁদের ধারণা ও প্রস্তাব প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করেন মঙ্গলবার। এই উপস্থাপনার সময় প্রধানমন্ত্রী সহ শ্রোতাদের অনেকেই বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে প্রশ্ন তোলেন এবং নানা সুপারিশ দেন। এই উপস্থাপনার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি যেভাবে ভেবেছিলেন প্রায় সেই একইভাবে সচিবরা তাঁদের দায়িত্ব পালন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে বৃ্হস্পতিবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অপরাধমূলক বিষয় সমূহে ‘পারস্পরিক আইনি সহায়তা’ সম্পর্কিত ‘বে অব বেঙ্গল ইনিসিয়েটিভ অন মাল্টি সেক্টরেল টেকনিক্যাল এন্ড ইকনোমিক কো-অপারেশন’ (বি আই এম এস টি ই সি) কনভেনশনের আনুষ্ঠানিক স্বীকৃতি দান এবং এতে সাক্ষর করার জন্য অনুমোদন দিয়েছে। এই কনভেনশনের ১৫ ধারা অনুযায়ী ‘সেন্ট্রাল অথরিটি’ হিসেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রককে মর্যাদা দেওয়া হয়েছে। এই অনুমোদনের ফলে অপরাধমূলক কার্যকলাপ নিয়ন্ত্রণে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও কার্যকর করে তুলতে বড় ধরনের অবদান রাখবে। সদস্য দেশগুলির মধ্যে সন্ত্রাসবাদ সংশ্লিষ্ট অপরাধ, আন্ত:দেশীয় সংগঠিত অপরাধ, মাদক পাচার, অর্থ তছরুপ ও সাইবার অপরাধ সহ অপরাধের তদন্ত ও বিচারপর্বের ক্ষমতা ও কার্যকারিতা বৃদ্ধি করতে পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্র আরও ব্যাপকভাবে সম্প্রসারণের লক্ষ্যমাত্রা গ্রহন করা হয়েছে। জীবনের সর্বস্তরের জনসাধারণের, বিশেষত গ্রামীণ নাগরিকদের ডিজিটাল ক্ষমতায়নের লক্ষ্যেই ডিজিটাল ভারত অভিযানের সূচনা এবং তা সম্ভব করে তুলতে এক সার্বিক নীতি অনুসরণের মাধ্যমে কাজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এজন্য ফাইবার অপটিক ব্যবস্থায় গ্রামগুলির মধ্যে সংযোগ স্থাপন, নাগরিকদের ডিজিটাল পন্থা-পদ্ধতি সম্পর্কে শিক্ষিত করে তোলা, মোবাইলের সাহায্যে পরিষেবা প্রদান এবং বৈদ্যুতিন উৎপাদন ব্যবস্থার মতো কর্মসূচির কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে। ভিডিও সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থায় ডিজিটাল ইন্ডিয়া মিশনের সুফলভোগীদের সঙ্গে আলাপচারিতার এক অনুষ্ঠানে আজ একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে যুক্ত করা হয়েছিল ৫০ লক্ষেরও বেশি সুফল গ্রহীতাকে। তাঁদের মধ্যে ছিলেন সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র, এনআইসি সেন্টার, জাতীয় জ্ঞান ব্যবস্থা সম্পর্কিত নেটওয়ার্ক, বিপিও, মোবাইল নির্মাণকারী সংস্থা এবং Mygov-এর প্রতিনিধিরা। ভীম অ্যাপ, রেল টিকিটের অনলাইন সংরক্ষণ এবং বৈদ্যুতিন পদ্ধতিতে পেনশন ও বৃত্তির অর্থ সংশ্লিষ্ট ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টগুলিতে জমা পড়ার ব্যবস্থা চালু হওয়ার ফলে সাধারণ মানুষের ওপর বোঝা এখন অনেকটাই হ্রাস পেয়েছে। সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্রগুলির গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তার কথা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, দেশের এই কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে গ্রামীণ ভারতে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে ডিজিটাল পরিষেবা। গ্রাম পর্যায়ে শিল্পোদ্যোগীদের উৎসাহদান ছাড়াও ১০ লক্ষেরও বেশি মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হয়েছে এই কেন্দ্রগুলির মাধ্যমে। শ্রী মোদী বলেন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের কাজ বৃদ্ধি পাওয়ার ফলে মধ্যসত্ত্বভোগী বা দালালদের উৎখাত করা সম্ভব হয়েছে। ২০ ঘন্টার প্রাথমিক কম্প্যুটার প্রশিক্ষণ ব্যবস্থার মাধ্যমে দেশের ৬ কোটি মানুষকে ডিজিটাল পদ্ধতি সম্পর্কে দক্ষ করে তোলাই হ’ল এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রীর মতে, ডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচি বিপিও ক্ষেত্রেও আমূল পরিবর্তন এনেছে। দেশের সর্বত্র বিপিও ইউনিট গড়ে ওঠায় তরুণ ও যুবকরা এখন তাঁদের ঘর-বাড়ির নিকটবর্তী অঞ্চলেই কাজ করার সুযোগ লাভ করছেন। বৈদ্যুতিন উৎপাদন শিল্পের কর্মীদের সঙ্গে আলাপচারিতাকালে শ্রী মোদী বলেন যে, গত চার বছরে বৈদ্যুতিন হার্ডওয়্যার উৎপাদনের ক্ষেত্রে দেশ এখন অনেকটাই এগিয়ে গেছে। ডিজিটাল ভারত কর্মসূচির মাধ্যমে শিক্ষা, কর্মসংস্থান, শিল্পোদ্যোগ এবং ক্ষমতায়ন সম্ভব হয়ে উঠছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল ভারত কর্মসূচি কিভাবে তাঁদের জীবনযাত্রায় এক বিশেষ পরিবর্তন এনে দিয়েছে, সে সম্পর্কে কর্মসূচির সুফল গ্রহীতারা অবহিত করেন প্রধানমন্ত্রীকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ২০১৮’র কমনওয়েলথ গেমসের টেবিল টেনিসে পদক জয়ীদের সঙ্গে কথা বলেন। বিজয়ী খেলোয়াড়রা আজ নতুন দিল্লীর সংসদ ভবনে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেন। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অসাধারণ দক্ষতা দেখানোর জন্য পদক জয়ীদের অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২০১৯ সালের সাধারণ নির্বাচনে ভোটার ভেরিফায়েবল পেপার অডিট ট্রেল(ভিভিপিএটি) মেশিন সংগ্রহের এক প্রস্তাবে আজ অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এই প্রক্রিয়ায় স্লিপটি ভোটারেরহাতে যাবে না এবং দ্বিতীয় কোন ব্যক্তি সেটি দেখতেও পাবেন না। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, শীর্ষ আদালত ২০১৩-র ৮ অক্টোবরের এক আদেশে পর্যায়ক্রমেভিভিপিএটি চালু করার নির্দেশ দিয়েছিল কেন্দ্রীয় সরকারকে। চায়নাওপেন-এ প্রথম সুপার সিরিজ খেতাব অর্জনের জন্য ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় পি ভি সিন্ধুকেঅভিনন্দিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রীতাঁর বার্তায় বলেছেন, “প্রথম সুপার সিরিজ খেতাব জেতার জন্য অভিনন্দন পি ভিসিন্ধুকে। সাধারণতন্ত্রী ভারত সরকার এবং রাশিয়া ফেডারেশনের মধ্যে ২০০৮-এর ৫ ডিসেম্বরের চুক্তি সম্পর্কিত ২ নম্বর প্রোটোকল রেলের জন্য বিশেষ উদ্দেশ্যসাধক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন লিমিটেড এবং জয়েন্ট স্টক কোম্পানি ‘ক্যাসকেড – টেকনলজিস’-এর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি রাশিয়ার রপ্তানি সংক্রান্ত প্রচেষ্টায় সহায়তাদান এবং ভারত-রাশিয়া মূলধনী পণ্যে লগ্নি সম্পর্কে শ্রেয়ী ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফিনান্স লিমিটেড এবং স্টেট কর্পোরেশন ‘ব্যাঙ্ক ফর ডেভেলপমেন্ট অ্যান্ড ফরেন ইকনমিক অ্যাফেয়ার্স’-এর মধ্যে সম্পাদিত মউ ‘জেআইটিএফ আরবান ইনফ্রাস্ট্রাকচার সার্ভিসেস লিমিটেড’ (ভারত সাধারণতন্ত্র), ‘জিন্দাল রেল ইনফ্রাস্ট্রাকচার লিমিটেড’ (ভারত সাধারণতন্ত্র), জয়েন্ট স্টক কোম্পানি, ‘রাশিয়ান এক্সপোর্ট সেন্টার’ (রাশিয়া ফেডারেশন) এবং ‘রেলট্রান্সহোল্ডিং’ (রাশিয়া ফেডারেশন)-এর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ন্যাশনাল ইনভেস্টমেন্ট প্রোমোশন এজেন্সি (ইনভেস্ট ইন্ডিয়া) এবং বিজনেস কাউন্সিল ফর কো-অপারেশন উইথ ইন্ডিয়া-র মধ্যে স্বাক্ষরিত ভারত ও রাশিয়ায় বিনিয়োগের প্রসার সম্পর্কিত মউ জাতীয় বিনিয়োগ প্রসার সংস্থা ইনভেস্ট ইন্ডিয়া এবং রসকংগ্রেস ফাউন্ডেশন-এর মধ্যে সম্পাদিত সহযোগিতা চুক্তি প্যালেস্তাইনের পক্ষে যিনি স্বাক্ষরদান ও বিনিময়ের দায়িত্বে ছিলেন ভারতের পক্ষে স্বাক্ষরকারী বিনিময়ের দায়িত্বে যিনি ছিলেন ভারত-প্যালেস্তাইন সহযোগিতায় বেথেলহেম-এর বিট সাহরে ৩০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে ভারত-প্যালেস্তাইন সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল স্থাপনের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত মউ ডঃ জাওয়াদ আউয়াদ, প্যালেস্তাইনের স্বাস্থ্য মন্ত্রী শ্রী বিজয় গোখেল, বিদেশ সচিব ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে মহিলাদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে ভারত-প্যালেস্তাইন ‘তুরথি’ কেন্দ্র স্থাপনের লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত মউ মিসেস আবির আউধেহ, জাতীয় অর্থনীতি বিষয়ক মন্ত্রী ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ব্যয়ে রামাল্লায় একটি নতুন জাতীয় মুদ্রণশালা স্থাপনের লক্ষ্যে ভারত-প্যালেস্তাইন সহযোগিতা সম্পর্কিত মউ মিঃ আহমদ আসাফ, প্যালেস্তাইনের সরকারি সম্প্রচার নিগম সম্পর্কিত মন্ত্রী এবং অর্থমন্ত্রীর পক্ষে সরকারি মুখপাত্র ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে মুথাল আল সুহাদা গ্রামে একটি বিদ্যালয় নির্মাণ সম্পর্কিত ভারত-প্যালেস্তাইন সহযোগিতা চুক্তি ডঃ সাবরি সায়দাম, প্যালেস্তাইনের শিক্ষা ও উচ্চতর শিক্ষা দপ্তরের মন্ত্রী ১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে প্যালেস্তাইনের তুবাস প্রদেশের তামুন গ্রামে একটি বিদ্যালয় নির্মাণ সম্পর্কিত ভারত-প্যালেস্তাইন সহযোগিতা চুক্তি ০.২৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগে আবু দিস-এ জওহর লাল নেহরু ফর বয়েজ প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারত-প্যালেস্তাইন সহযোগিতা সম্পর্কিত মউ নৌ-বাহিনীর ডুবো জাহাজ আইএনএস কালভরি-কে আগামীকাল অর্থাৎ বৃহস্পতিবারমুম্বাই থেকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ডিজেল বিদ্যুৎ চালিত এই ডুবো জাহাজটি নির্মাণ করেছে মাজাগাঁও ডক শিববিল্ডার্স লিমিটেড। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সাফল্যের নিদর্শন হিসাবে এই ধরণেরআরও পাঁচটি ডুবো জাহাজ তৈরি করা হবে ভারতীয় নৌ-বাহিনীর জন্য। এর নির্মাণে সহযোগিতাকরছে ফ্রান্স। আগামীকাল কেন্দ্রীয় প্রতিরক্ষা মন্ত্রী, মহারাষ্ট্র সরকারের গুরুত্বপূর্ণপদাধিকারী এবং বরিষ্ঠ নৌ-সেনা আধিকারিকদের উপস্থিতিতে আইএনএস কালভরি উৎসর্গ করাহবে জাতির উদ্দেশে। চোখের রোগ নির্ণয় এবং দুর্ঘটনায় আহত মানুষদের দ্রুত চিকিৎসা সংক্রান্ত নতুন উদ্ভাবন সম্পর্কে ঐ সংস্থার পক্ষ থেকে তাঁদের ওয়াকিবহাল করা হয়। বশ বৃত্তি শিক্ষা কেন্দ্রে স্কুল ছুট পড়ুয়াদের দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিটি সম্পর্কে দুই নেতাকে প্রয়োজনীয় তথ্যও জানানো হয়। ন্যাসকম এবং ফ্রনহোফার ইন্সটিটিউট আয়োজিত বাণিজ্য ফোরামে অংশগ্রহণ করেন প্রধানমন্ত্রী এবং জার্মান চ্যান্সেলর। ঐ অনুষ্ঠানে প্রদত্ত তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সারা বিশ্বে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে যখন মন্দার ভাব চলছে, তখন বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভারত উল্লেখযোগ্য সাফল্য দেখিয়েছে। বহুদিন ধরে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে যে ভীতি ও আশঙ্কার ভাব লক্ষ্য করা গেছে তা দূর করতে সরকার যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে প্রধানমন্ত্রী তাও ব্যাখ্যা করেন। সেইসঙ্গে, ভারতে বিনিয়োগ সংক্রান্ত যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তারও একটি চিত্র তিনি তাঁর ভাষণে তুলে ধরেন। জার্মান চ্যান্সেলর’কে আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের স্বপ্নকে সফল করে তুলতে আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ আমরা প্রার্থনা করি। দ্রুত ও কার্যকরভাবে লক্ষ্যমাত্রায় উপনীত হতে আমাদের অঙ্গীকার ও আগ্রহ জার্মান সংস্থাগুলির কাছে অফুরন্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে এসেছে। ৫ কোটি গৃহ নির্মাণ থেকে ১০০টি স্মার্ট সিটি গড়ে তোলা, রেল নেটওয়ার্ক ও স্টেশনগুলির আধুনিকীকরণ থেকে শুরু করে নতুন নতুন রেল করিডর গড়ে তোলা, ১৭৫ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন থেকে শুরু করে সংবহন ও বন্টন ব্যবস্থা গড়ে তোলা, জাতীয় মহাসড়ক, সেতু ও মেট্রোরেল স্থাপন করা সহ বিভিন্ন সুযোগ আপনাদের সামনে এখন উপস্থিত। উৎপাদন ও সৃজনশীলতার এই বিশাল সম্ভাবনা একত্রে অন্য আর কোথাও খুঁজে পাওয়া যাবে না। শুধু তাই নয়, পৃথিবীতে এমন কোনও স্থান নেই যেখানে এতো ব্যাপকভাবে এই অনন্ত সম্ভাবনাকে কাজে লাগানো যায়। ‘ডিজিটাল ভারত’ এবং ‘দক্ষ ভারত’ অভিযানের মধ্য দিয়ে আমরা এই সম্ভাবনার মধ্যে আরও গতি ও শক্তি সঞ্চার করতে চাই। এই শক্তির পুরোপুরিভাবে কাজে লাগাতে ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ অভিযানও আমরা শুরু করেছি। ভারতে থেকে কাজ করা মানেই বোঝায় দৃঢ় বাণিজ্যিক ইচ্ছার প্রতিফলন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’য় অংশগ্রহণ করা মানেই উন্নততর বাণিজ্যিক লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া”। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ” জার্মান প্রযুক্তি এবং ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি একত্রে যে বিশ্ব মানের উৎপাদন গড়ে তুলতে পারে – চ্যান্সেলর মার্কেল-এর এই দৃষ্টিভঙ্গীর আমি বিশেষ প্রশংসা করি। চ্যান্সেলর মার্কেল-এর ভারত ত্যাগের মুহূর্তে তাঁকে আমি আমার কৃতজ্ঞতা জানাই। আজ থেকে তিনদিনের সফরে গুজরাটের কচ্ছ জেলায় যাচ্ছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রথমে প্রধানমন্ত্রী যাবেন ভুজ-এ। সেখানে শ্যামজি কৃষ্ণ ভার্মার মরণোত্তর পুনর্নিয়োগপত্র তথা শংসাপত্র তুলে দেবেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী আনন্দীবেন প্যাটেলের হাতে। লন্ডনের অনারেবল সোসাইটি অফ দ্য ইনার টেম্পল-এর পক্ষ থেকে এই শংসাপত্র দেওয়া হয়েছে। গত মাসে যুক্তরাজ্য সফরকালে লন্ডনে প্রধানমন্ত্রীর হাতে এই শংসাপত্র তুলে দেওয়া হয়। এরপর প্রধানমন্ত্রী যাবেন ধোরদো-তে। এরপর থেকে এনআরএইচএম এবংএনইউএইচএম – এই দুটি কর্মসূচি এনএইচএম-এর আওতায় দুটি পৃথক কর্মসূচি বলে চিহ্নিতকরা হয়েছে। কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা আজ জাতীয় স্বাস্থ্য মিশনের বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণের অগ্রগতিপর্যালোচনাকালে এমএমআর, আইএমআর, ইউ৫এমআর এবং টিএফআর উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পেয়েছেবলে জানা যায়। · জাতীয়স্বাস্থ্য মিশনের কার্যকালে ইউ৫এমআর হ্রাস পেয়েছে প্রায় দ্বিগুণ। · এমএমআর-এরহার হ্রাস পাওয়ার ফলে এমডিজি৫-এর লক্ষ্যমাত্রা পূরণের পথে আরও এগিয়ে গেছে ভারত। · ম্যালেরিয়া,যক্ষ্মা এবং এইচআইভি/এড্‌স-এর নিয়ন্ত্রণ কর্মসূচিও উল্লেখযোগ্য সাফল্য লাভ করেছে। · ২০১০সালে কালাজ্বর প্রবণ এলাকাগুলিতে প্রতি ১০ হাজার জনপ্রতি কালাজ্বরে আক্রান্ত হওয়ারঘটনা লক্ষ্য করা গিয়েছিল ২৩০টির মতো ব্লকে। কিন্তু ২০১৬-তে এক্ষেত্রে ব্লকেরসংখ্যা হ্রাস পেয়ে দাঁড়িয়েছে ৯৪-এ। · ১০লক্ষ জনসংখ্যা প্রতি একটি করে এমএমইউ-এর নীতিটিকেও শিথিল করা হয়েছে। এরপর প্রধানমন্ত্রী চলে যাবেন ব্যাঙ্গালোরে| সেখানে তিনি দশমাহ সৌন্দর্যলহরী পরায়নোত্সব মহাসর্মপণে এক জনসভায় ভাষণ দেবেন| এর আগে, ২০১৪ সালের২৪ ডিসেম্বর কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে সংস্থার কর্মীদেরজন্য স্বেচ্ছাবসর প্রকল্পটি চালু করা হয় ২০১৫ সালে। এক ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে বাহাদুরগড়-মুন্দকা মেট্রো লাইনটির রবিবার সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী। দিল্লি মেট্রোর এই নতুন সেকশনটি চালু হওয়ার জন্য হরিয়ানা ও দিল্লিবাসীদের অভিনন্দিত করেন তিনি। গুরগাঁও ও ফরিদাবাদের পর এটিই হ’ল হরিয়ানার তৃতীয় স্থান, যা যুক্ত হ’ল মেট্রো রেল প্রকল্পের সঙ্গে। দিল্লি মেট্রো কিভাবে নাগরিকদের জীবনে ইতিবাচক স্বাচ্ছন্দ্য এনে দিয়েছে, তা এদিন প্রধানমন্ত্রী বিবৃত করেন তাঁর ভাষণে। বাহাদুরগড়ে অর্জিত বিশেষ অর্থনৈতিক সাফল্য ও অগ্রগতির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন যে, সেখানে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা কেন্দ্র রয়েছে, যেখানে দিল্লি থেকে যাতায়াত করে ছাত্রছাত্রীরা পঠন-পাঠনে সুযোগ গ্রহণ করে থাকে। মেট্রোর নতুন লাইনটি চালু হওয়ার ফলে তাঁদের বিশেষ সুবিধা হবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন যে, উন্নয়ন ও যোগাযোগের মধ্যে এক প্রত্যক্ষ যোগ বা সম্পর্ক রয়েছে। মেট্রো প্রকল্প যে স্থানীয় অধিবাসীদের কাছে আরও বেশি মাত্রায় কর্মসংস্থানের সুযোগ-সুবিধা এনে দেবে এ ব্যাপারে বিশেষ আশাবাদী তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মেট্রো প্রকল্পের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার এক বিশেষ নীতি অনুসরণ করে চলেছে, যার আওতায় দেশের মেট্রো রেল নেটওয়ার্কগুলির মধ্যে এক উন্নত মানের যোগাযোগ স্থাপন করা হবে। কারণ, সরকার মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হ’ল দেশের শহরগুলিতে এক সুবিধাজনক ও আরামদায়ক অথচ সকলের নাগালসাধ্য এক নগর পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলা। প্রধানমন্ত্রী প্রথমে আয়ারল্যান্ড এর ডাবলিন-এ পৌছবেন, সেখানে তিনি আয়ারল্যান্ড-এর রাষ্ট্রপ্রধান অর্থাৎ তাওইসিচ মি. এঁদা কেনির সাথে বৈঠক করবেন | আয়ারল্যান্ড-এ বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের সাথেও তিনি সংক্ষিপ্ত মত বিনিময় বৈঠক করবেন | ওই বৈঠকের পরই তিনি নিউ ইয়র্ক সিটি-র উদ্দেশ্যে রওয়ানা হবেন | ভারতে ব্লুমবার্গের ২০ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে আজ এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত। এই সময়কালে ভারতের অর্থনীতি সম্পর্কে ব্লুমবার্গের কাছ থেকে আমরা বুদ্ধিদীপ্ত মতামত ও বিশ্লেষণ লাভ করেছি। আর্থিক ক্ষেত্রে তা হয়ে উঠেছে এক অতি প্রয়োজনীয় বিষয়। এছাড়াও, স্মার্ট সিটি কর্মসূচির নক্‌শা রচনায় মিঃ মাইকেল ব্লুমবার্গের কাছ থেকে যে সমস্ত মূল্যবান পরামর্শ লাভ করেছি সেজন্য আমি তাঁর কাছে বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। বিশ্বের অন্যতম এক প্রধান শহরের মেয়র হিসেবে মিঃ ব্লুমবার্গের ব্যক্তিগত দৃষ্টিভঙ্গী রয়েছে একটি শহর ভালো করে গড়ে তোলার বিষয়ে। আমাদের স্মার্ট সিটি কর্মসূচির নক্‌শা তৈরির বিষয়টি সমৃদ্ধ হয়েছে তাঁর মতামতকে অনুসরণ করে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অগ্রগতিতে ভারতের অবদানকে ঘিরে বিশ্বের প্রত্যাশা এখন প্রচুর। যদি সময় বাধা হয়ে না দাঁড়ায়, তা হলে ভারত কিভাবে এই চ্যালেঞ্জ মোকাবিলা করতে চায় সে সম্পর্কে কিছু কথা আমি আপনাদের সামনে বলতে চাই। তিনটি প্রধান বিষয়ের ওপর আমি আমার বক্তব্য রাখবো। প্রথমত, আমার আলোচনার বিষয় হবে ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতি। দ্বিতীয়ত, কয়েকটি প্রশাসনিক ব্যবস্থা এবং নীতিগত সংস্কারের একটি রেখাচিত্র আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরবো, যা থেকে উপলব্ধি করা যাবে এই অগ্রগতি সম্ভব করে তোলা এবং তা নিরন্তর রাখার কারণগুলি। আমার তৃতীয় আলোচ্য বিষয় হবে, অর্থনৈতিক বিকাশের একটি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ দিক – কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। বিশেষজ্ঞদের মধ্যে একটি বিষয়ে কোনও দ্বিমত নেই যে, বিশ্ব অর্থনীতির একটি উজ্জ্বলতম কেন্দ্রবিন্দু হল ভারত। এই সমস্তই সম্ভব হয়ে উঠেছে দৈববশে নয়, বরং ভালো নীতির সুবাদে। • ২০০৮ থেকে ২০০৯-এর মধ্যে অশোধিত তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ১৪৭ ডলার থেকে দ্রুত নেমে আসে ৫০ ডলারেরও নীচে। ২০১৪ এবং ২০১৫’র তুলনায় এই সময়ে দাম নেমে যায় দ্রুততর গতিতে। • বিকাশশীল অন্যান্য বহু অর্থনীতিই আমদানিকৃত তেলের ওপর নির্ভরশীল। তেলের মূল্য পরিস্থিতি যদি সাফল্যের চালিকাশক্তি হয়ে উঠতো, তা হলে ঐ সমস্ত দেশের ক্ষেত্রে তার ফল হতো একই রকম। কিন্তু, বাস্তবে তা হয়নি। • বিশ্ব বাণিজ্য বা তার অগ্রগতির ক্ষেত্রে আমরা খুব একটা সৌভাগ্যের অধিকারী হতে পারিনি; বরং উভয় ক্ষেত্রেই উন্নতির হার ছিল খুবই কম। তাই, রপ্তানি বৃদ্ধির দিক থেকে কোনও রকম সাহায্য আমরা তা থেকে লাভ করিনি। • বৃষ্টিপাত বা আবহাওয়া কোনও দিক থেকেই অনুকূল পরিবেশ আমাদের ছিল না। ২০১৪ এবং ২০১৫ দুটি বছরেই আমরা খরা পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছি। অ-সময়ে শিলাবৃষ্টি ছিল আরেকটি প্রতিকূল ঘটনা। কিন্তু, তা সত্ত্বেও ২০০৯-১০ অর্থ বছরের তুলনায় দেশে খাদ্যশস্য উৎপাদনের পরিমাণ ছিল বেশি এবং মুদ্রাস্ফীতির হারও ছিল কম। বিশ্ব অগ্রগতির শীর্ষে পৌঁছনো ভারতের ক্ষেত্রে এক অস্বাভাবিক ঘটনা। কিন্তু, প্রকৃত সত্য হল এই যে, ভারতের কষ্টার্জিত অর্থনৈতিক সাফল্যের মূলে রয়েছে দূরদৃষ্টি, বলিষ্ঠ নীতি এবং সফল ব্যবস্থাপনা। বিগত দুটি আর্থিক বছরে অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে আমাদের লক্ষ্যমাত্রা ছিল উচ্চাকাঙ্খামূলক। মূলধনী খাতে ব্যয় বৃদ্ধির সময়েও ঘাটতির মাত্রাকে আমরা কমিয়ে আনতে পেরেছি। চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশক্রমে কর রাজস্বের ক্ষেত্রে কেন্দ্রের ভাগে নজিরবিহীন এক কাটছাঁট সত্ত্বেও ঘাটতির পরিমাণ আমরা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পেরেছি। ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে আর্থিক ঘাটতিকে জি ডি পি’র ৩.৫ শতাংশে রাখার লক্ষ্যমাত্রা আমরা স্থির করেছি। গত ৪০ বছরে এই হার হবে সবচেয়ে কম। আমাদের অগ্রগতির এই হার এক বাক্যে স্বীকার করে নিয়েছে বিশ্বের প্রধান প্রধান অর্থনীতিগুলি। তবে, অনেকেই এখন সংশয়ের মধ্যে রয়েছেন, যাঁদের মতে, অগ্রগতির এই হার সঠিক নয় বলেই তাঁরা মনে করেন। তবে, কিছু প্রকৃত সত্যের অবতারণার মাধ্যমে আমি বোধ হয় তাঁদের এই দ্বিধা বা সংশয় দূর করতে পারবো। প্রথমেই ঋণ পরিস্থিতির দিকে তাকানো যাক। ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরের পর থেকে দেশে ঋণ সহায়তা দানের পরিমাণ উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০১৫’র ফেব্রুয়ারি থেকে ২০১৬’র ফেব্রুয়ারি এই এক বছরের মধ্যে ঋণ সহায়তা দানের পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে ১১.৫ শতাংশ। বিভিন্ন কর্পোরেট ক্ষেত্রে দেশীয় এবং বিদেশি ঋণ সংগ্রহের বিষয়টি ২০১৫-১৬ অর্থ বছরের প্রথম নয় মাসে বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ শতাংশেরও বেশি। ক্রেডিট রেটিং-এর ক্ষেত্রেও কয়েকটি উল্লেখযোগ্য ঘটনা ঘটেছে। ২০১৩ এবং ২০১৪’তে যে সমস্ত সংস্থার ক্রেডিট রেটিং ছিল বেশ কম, সেগুলির সংখ্যা ক্রেডিট রেটিং-এর দিক থেকে উন্নত সংস্থাগুলির তুলনায় ছিল অনেক বেশি। কিন্তু, এই পরিস্থিতি এখন আমূল বদলে গেছে। উচ্চ ক্রেডিট যুক্ত শিল্প সংস্থার সংখ্যা এখন ওপরের দিকে। বড় বড় কর্পোরেট সংস্থাগুলির কাছ থেকে বকেয়া প্রাপ্য আদায়ের জন্য সরকার এবং রিজার্ভ ব্যাঙ্ক কঠোর ব্যবস্থা অবলম্বন করেছে। এই সবকটি ক্ষেত্রই গ্রামীণ অর্থনীতির সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত। বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ এই ক্ষেত্রগুলিতে যেভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে তাতে আমি বিশেষভাবে উৎসাহিত। ২০১৫’র সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত নির্মাণ সংক্রান্ত কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে ৩১৬ শতাংশ। অন্যদিকে, কম্প্যুটার সফটওয়্যার ও হার্ডওয়্যারের ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির হার দাঁড়িয়েছে ২৮৫ শতাংশ। স্বয়ংক্রিয় যানশিল্পে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ বেড়েছে ৭১ শতাংশ। সরকারের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ নীতি যে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির সঙ্গে যুক্ত ক্ষেত্রগুলিতে উল্লেখযোগ্য প্রভাব বিস্তার করেছে এই ঘটনা তারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। বিশ্বব্যাপী রপ্তানি বাণিজ্যের পরিবেশ প্রতিকূল থাকার ফলে উৎপাদন শিল্পের ফল হয়ে উঠেছে অস্থির। তবে, উৎপাদনের কয়েকটি প্রধান প্রধান ক্ষেত্রে দ্রুত উন্নতির ঘটনা আমরা লক্ষ্য করেছি। অতীতে কৃষি উৎপাদনের ওপরই বেশি গুরুত্ব দেওয়া হতো, কৃষকের আয় বা উপার্জনের ওপর নয়। আমি জোর দিয়েছি আগামী ২০২২ সালের মধ্যে কৃষিজীবী মানুষের আয় দ্বিগুণ করে তোলার ওপর। যদিও আমি এটিকে চ্যালেঞ্জ হিসেবে গ্রহণ করেছি, তবুও এটি শুধুমাত্র একটি চ্যালেঞ্জই নয়। উন্নত কৃৎকৌশল, সুপরিকল্পিত কর্মসূচি, পর্যাপ্ত সহায়সম্পদ এবং দক্ষ প্রশাসনিক ব্যবস্থায় রূপায়ণের মধ্য দিয়ে এই লক্ষ্যমাত্রায় উপনীত হওয়া সম্ভব। যেহেতু, দেশের মোট জনসংখ্যার এক বৃহৎ অংশ কৃষির ওপর নির্ভরশীল তাই কৃষকদের আয় ও উপার্জন দ্বিগুণ করে তোলা সম্ভব বলে তা থেকে বিশেষভাবে উপকৃত হবে অর্থনীতির অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিও। আমাদের প্রকৌশল সম্পর্কে দু-চার কথা বলা যেতে পারে : • প্রথমত, ব্যাপক বাজেট সংস্থানের মাধ্যমে সেচ ব্যবস্থার ওপর আমরা বিশেষভাবে দৃষ্টি দিয়েছি। সেচ ও জল সংরক্ষণ এই দুটি বিষয়কে যুক্ত করে সেচ ব্যবস্থার প্রসারে আমরা এক সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গী গ্রহণ করেছি। আমাদের লক্ষ্য হল – ‘প্রতিটি জলবিন্দুর বিনিময়ে অধিকতর শস্য উৎপাদন’। • দ্বিতীয়ত, উন্নতমানের শস্যবীজ এবং দক্ষতার সঙ্গে সার ব্যবহারের ওপর আমরা জোর দিয়েছি। মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার জন্য আমরা চালু করেছি ‘সয়েল হেলথ কার্ড’, যার সাহায্যে মাঠের প্রকৃত অবস্থা পরীক্ষার মাধ্যমে নির্ধারণ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এর ফলে, উৎপাদন ব্যয় যেমন হ্রাস পাবে, কৃষকের নিট আয় বা উপার্জনও অনুরূপভাবে বৃদ্ধি পাবে। • তৃতীয়ত, উৎপাদিত ফসলের একটা বড় অংশ ক্রেতা বা ভোক্তাদের কাছে পৌঁছনোর আগেই নষ্ট হয়। পচনশীল শস্যের ক্ষেত্রে পরিবহণের সময়েই তা নষ্ট হয়ে যায়। কিন্তু যে সমস্ত শস্য পচনশীল নয়, সেগুলি নষ্ট হয় গুদামজাত করার সময়ে। শস্য মজুতের পরিকাঠামোকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে এবং হিমঘর তৈরির বিষয়টিকে জোরদার করে তুলতে আমরা বড় অঙ্কের বিনিয়োগের লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি। এর ফলে, মাঠ থেকে ফসল তোলার পরবর্তীকালে ক্ষয়ক্ষতির হাত থেকে খাদ্যশস্য বাঁচানো সম্ভব হবে। • চতুর্থত, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের মাধ্যমে মূল্য সংযোজনের কাজ শুরু করছি আমরা। দৃষ্টান্তস্বরূপ বলা যায় যে, আমার আহ্বানে সাড়া দিয়ে কোকাকোলা সংস্থা সম্প্রতি তাদের তৈরি কয়েকটি ঠান্ডা পানীয়’তে ফলের রস যুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। • পঞ্চমত, একটি জাতীয় কৃষি বাজার গঠনের মাধ্যমে যাবতীয় ত্রুটি-বিচ্যুতি আমরা দূর করার চেষ্টা করেছি। ৫৮৫টি নিয়ন্ত্রিত পাইকারি বাজারে আমরা একটি বৈদ্যুতিন বিপণন মঞ্চ চালু করতে চলেছি। বিক্রয় মূল্যের বৃহত্তর অংশ যাতে কৃষকদের হাতে গিয়ে পৌঁছয় এবং মধ্যবর্তী দালালদের সংখ্যা যাতে কমিয়ে আনা যায় তা আমরা নিশ্চিত করতে চাই। এবারের বাজেটে এই একই উদ্দেশ্যে দেশের খাদ্য উৎপাদন ক্ষেত্রেও আমরা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের সূচনা করার প্রস্তাব রেখেছি। • ষষ্ঠত, আমরা চালু করেছি ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’। প্রতিকূল জলহাওয়া পরিস্থিতিতে তাঁদের আয় ও উপার্জন যাতে সুরক্ষিত থাকে এই কর্মসূচির মাধ্যমে তা নিশ্চিত করে তোলা হবে। • সপ্তমত, কৃষি সহায়ক বিভিন্ন কর্মপ্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে উপার্জন বৃদ্ধির প্রস্তাব রেখেছি আমরা। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করে তোলার লক্ষ্যমাত্রা আর্জনে আমরা যে সফল হতে চলেছি, সে সম্পর্কে দৃঢ় বিশ্বাস রয়েছে আমার। ভারতীয় কৃষি ব্যবস্থা ক্ষেত্রের প্রবাদ পুরুষ ডঃ এম এস স্বামীনাথন এ বিষয়ে যে আমার সঙ্গে একমত, তা সত্যিই আনন্দের কথা। তিনি আমাকে কৃতজ্ঞতা জানিয়েছেন কৃষক-বান্ধব বাজেট পেশের জন্য। কৃষকদের উপার্জন বৃদ্ধির ওপর আমরা যে গুরুত্ব আরোপ করেছি তাকে স্বাগত জানিয়েছেন তিনি। এ বিষয়ে তাঁর বক্তব্য আমি এখানে তুলে ধরতে চাই : কৃষির রূপান্তরের লক্ষ্যে বীজ বপন করা হয়েছে, যাতে দেশের যুবসমাজকে কৃষির প্রতি আকৃষ্ট করে তোলা যায় এবং তাঁদের এর সঙ্গে যুক্ত রাখা যায়। কৃষি ক্ষেত্রে এক নতুন যুগের অভ্যুদয় হতে চলেছে”। আমাদের অগ্রগতির মূলে যে সমস্ত নীতি ও কর্মসূচি কাজ করে চলেছে তাঁর কয়েকটি সম্পর্কে এবার আমি কিছু বক্তব্য রাখতে চাই। প্রশাসনিক সংস্কার এবং তার রূপায়ণে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীর কথা দিয়েই আমি শুরু করতে চাই। তাই, প্রাপ্ত সহায়সম্পদের সর্বোচ্চ ব্যবহার সম্ভব করে তুলতে হবে দক্ষতর রূপায়ণের মাধ্যমে। শুধুমাত্র নীতি ঘোষণা কিংবা তথাকথিত নীতির কথা বলে কাজের কাজ কিছুই হয় না। এমনকি, নীতি সংস্কারের থেকেও বেশি জরুরি রূপায়ণের প্রকৃতিতে পরিবর্তন ঘটানো। বিষয়টি একটু ব্যাখ্যা করা যাক। কিন্তু আমরা এখন খাদ্য নিরাপত্তা আইন চালু করছি দেশ জুড়ে। যে স্থায়ী সহায়সম্পদ গড়ে তোলার দিকে আমরা নজর দিয়েছি, তাতে উপকৃত হবেন দেশের জনসাধারণ, দালালরা নয়। সাধারণভাবে কর্মসূচি রূপায়ণের কাজে এবং বিশেষভাবে দুর্নীতি রোধের ক্ষেত্রে আমরা যে রেকর্ড স্থাপন করতে পেরেছি তা এখন কারও কাছে অজানা নয়। তাই, আমি সংক্ষেপে বিষয়টি তুলে ধরতে চাই। এবার আমি নীতি সংস্কার প্রসঙ্গে দু-এক কথা বলতে চাই। বর্তমান সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকে মুদ্রাস্ফীতির হার স্থায়ীভাবে কমিয়ে আনার কথা আমি উল্লেখ করেছি। আর্থিক নীতিকে শক্তিশালী করে তুলতে আমরা যে সমস্ত বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি তার ফলশ্রুতিতেই তা সম্ভব হয়ে উঠেছে। গত বছর ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-এর সঙ্গে আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি এক আর্থিক কাঠামো গড়ে তোলার বিষয়ে। এ বছর অর্থ বিলে আমরা ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাঙ্ক-এর সংশোধনের প্রস্তাব এনেছি। এই কমিটিতে সরকারের পক্ষ থেকে কাউকে অন্তর্ভুক্ত করা হবে না। আমরা আরেকটি বড় ধরণের নীতিগত সংস্কার প্রচেষ্টার উদ্যোগ নিয়েছি পেট্রোলিয়াম ক্ষেত্রে। এর ফলে, বিভিন্ন পর্যায়ে আমলাতান্ত্রিক নিয়ন্ত্রণকে দূর করা সম্ভব হয়ে উঠবে। বর্তমানে চালু যে সমস্ত প্রকল্পগুলির কাজ খুব বেশি এগোয়নি, সেখানেও আমরা বিপণন ও মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে স্বাধীনতা দেওয়ার চেষ্টা করেছি। সংসদে অনুমোদিত হয়েছে আবাসন নিয়ন্ত্রণ আইন রচনার প্রস্তাব, যা আবাসনের ক্ষেত্রে এক বড় ধরণের পরিবর্তন সম্ভব করে তুলবে। এই বিলটি বহুদিন মুলতুবি থাকার পর অনুমোদিত হওয়ার ফলে দরিদ্র ও মধ্যবর্তী ক্রেতা এবং আবাসন নির্মাতাদের কর সহ অন্যান্য ক্ষেত্রে বেশ কিছু সুযোগ-সুবিধা দানেরও প্রস্তাব রূপায়ণ সম্ভব হয়ে উঠবে। বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষেত্রে ‘উদয়’ কর্মসূচিটি রাজ্য সরকারগুলির সুযোগ-সুবিধা সংক্রান্ত কাঠামোতে স্থায়ীভাবে পরিবর্তন এনে দিয়েছে। উচ্চাকাঙ্খামূলক লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে এখন যুক্ত হবে প্রকল্প রূপায়ণ সংক্রান্ত বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রসারের বিষয়টি। এই কর্মসূচির আওতায় লোকসানে চলা বিদ্যুৎ বন্টন সংস্থাগুলির ক্ষতির পরিমাণটি রাজ্য সরকারগুলি তাদের আর্থিক ঘাটতির লক্ষ্যমাত্রার সঙ্গে যুক্ত করতে পারবে। কিন্তু, বিদ্যুৎ ক্ষেত্রটিকে দক্ষতার সঙ্গে পরিচালনা করা সম্ভব হবে রাজ্যগুলির পক্ষে। ইতিমধ্যেই ৯টি রাজ্য এ ব্যাপারে চুক্তিবদ্ধ হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে। প্রতি বছর ১ হাজার ৫০০ মেগাওয়াটেরও কম সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা থেকে আমরা এখন উন্নীত হতে চলেছি বছরে ১০ হাজার মেগাওয়াট করে সৌরবিদ্যুৎ উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে। নৌ-পরিবহণযোগ্য জলপথের সংখ্যা ৫ থেকে উন্নীত হবে ১০৬-এ। সংস্কারের ফলও ইতিমধ্যে আমরা লাভ করেছি। বিহারে ৫০০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগে স্থাপিত হতে চলেছে দুটি রেল ইঞ্জিন তৈরির কারখানা। বিমা ক্ষেত্রে ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার যা কি না প্রায় ৯ হাজার ৬০০ কোটি টাকার সমপরিমাণ বিনিয়োগ করা হচ্ছে ১২টি সংস্থায়। শেয়ার বাজারের ক্ষেত্রেও বিদেশি বিনিয়োগের সীমা আমরা আরও বাড়িয়ে তুলেছি। এ সমস্ত সংস্কার প্রচেষ্টা সম্পর্কে আপনারা অবহিত রয়েছেন বলেই আমার ধারণা। আপনাদের আলোচ্য সূচিতে ‘নতুন অর্থনীতি’র বিষয়টি যে অন্তর্ভুক্ত রয়েছে, তা আমি লক্ষ্য করেছি। পরিশেষে, কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্রে আমরা যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি সেই প্রসঙ্গে কিছু বক্তব্য রাখছি। এই বিষয়টি রয়েছে আমার অগ্রাধিকারের তালিকায়। শ্রমশক্তি নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রেও সামাজিক সুরক্ষা কিংবা প্রথাগত কর্মসংস্থান ছাড়া অস্থায়ী কর্মসংস্থানের প্রবণতাই বেশি লক্ষ্য করা গেছে। এই পরিস্থিতির পরিবর্তনে দুটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি আমরা। দ্বিতীয়ত, কর্মচারী ভবিষ্যনিধি তহবিলে যাঁরা নতুন করে যুক্ত হতে চান, তাঁদের ক্ষেত্রে তিন বছর ধরে পেনশনের একটি অংশ ঐ তহবিলে যোগ করার দায়িত্ব নেওয়া হবে সরকারের পক্ষ থেকে। মাসিক ১৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বেতনভোগীদের ক্ষেত্রে তা প্রযোজ্য ও কার্যকর হবে। এই ব্যবস্থায় লক্ষ লক্ষ বেকার এবং অস্থায়ী কর্মী উপকৃত হবেন বলে আমরা আশা করছি। সরকারি চাকরি ক্ষেত্রে দুর্নীতি দূর করতে নীচু তলার এবং মাঝারি পর্যায়ের পদগুলিতে নিয়োগের জন্য সাক্ষাৎকার প্রথা আমরা তুলে দিয়েছি। এক স্বচ্ছ পরীক্ষা গ্রহণ পদ্ধতির মাধ্যমে প্রার্থীদের এখন থেকে নিয়োগ করা হবে। সরকার এবং রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি চাকরিতে নিয়োগের জন্য বেশ কিছু পরীক্ষা নিয়ে থাকে। এতদিন পর্যন্ত পরীক্ষার ফলাফল সরকারের কাছেই রাখা থাকতো। কিন্তু, এখন থেকে আমরা তা প্রার্থীর সম্মতিসাপেক্ষে বিভিন্ন নিয়োগকর্তার কাছে পাঠিয়ে দেব। ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা’র অগ্রগতি সম্পর্কেও আপনারা অবহিত বলে মনে করি। এ বছর ৩১ মিলিয়ন ঋণের আবেদন মঞ্জুর করা হয়েছে এর আওতায়, যার আর্থিক পরিমাণ প্রায় ১৯ বিলিয়ন ডলার। আনন্দের বিষয়, আবেদনকারীদের মধ্যে ৭৭ শতাংশই হলেন শিল্পোদ্যোগ স্থাপনে উৎসাহী মহিলা প্রার্থী। এঁদের মধ্যে আবার ২২ শতাংশ তপশিলি জাতি ও তপশিলি উপজাতি সম্প্রদায়ভুক্ত। দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে আমার সরকারের প্রচেষ্টার কথাও এখন কারও অজানা নয়। শিক্ষা ক্ষেত্রে দুটি যুগান্তকারী পরিবর্তনের কথা ঘোষণা করা হয়েছে এবারের বাজেটে। আমাদের লক্ষ্য হল উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির ক্ষমতায়ন, যাতে তারা উচ্চতম মানে পৌঁছতে পারে। সূচনায় ১০টি সরকারি এবং ১০টি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানকে আমরা এই কাজে সাহায্য করবো, যাতে তারা বিশ্ব মানের শিক্ষা ও গবেষণা কেন্দ্র রূপে গড়ে উঠতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশন এবং সর্বভারতীয় কারিগরি শিক্ষা পরিষদের মতো পৃথক নিয়ন্ত্রণ কাঠামো গড়ে তোলা হবে তাদের জন্য। শিক্ষাদান, প্রশাসন এবং অর্থ সংক্রান্ত বিষয়ে তাদের দেওয়া হবে পূর্ণ স্বায়ত্তশাসন। ১০টি সরকারি বিশ্ববিদ্যালয়কে আমরা আগামী পাঁচ বছরে যোগান দেবো অতিরিক্ত সহায়সম্পদ। এক নতুন যাত্রাপথের সূচনা হবে এভাবেই। স্কুল শিক্ষার ক্ষেত্রেও আরেকটি উদ্যোগ গ্রহণ করছি আমরা। শিক্ষার মান সম্ভব করে তোলার বিষয়টি সরকারের এক প্রাথমিক উদ্দেশ্য। এই বিষয়টিকে সম্ভব করে তুলতে সহায়সম্পদের বেশ কিছু অংশ আমরা শিক্ষার মানোন্নয়নের কাজে লাগাতে আগ্রহী। সর্ব শিক্ষা অভিযানের আওতায় এই ব্যবস্থা আমরা সম্ভব করে তুলতে চাই। আপনারা সকলেই আমাদের এই পদক্ষেপকে স্বাগত জানাবেন বলেই আমি নিশ্চিতভাবে বিশ্বাস করি। ভদ্র মহিলা ও ভদ্র মহোদয়গণ, অনেকগুলি পদক্ষেপই আমরা গ্রহণ করেছি। আরও অনেক ক্ষেত্রে পদক্ষেপ গ্রহণের কাজ এখনও বাকি থেকে গেছে। কতকগুলির সুফল ইতিমধ্যেই আমরা লক্ষ্য করেছি। এ পর্যন্ত যে সাফল্য আমরা অর্জন করেছি তা আমার মনে এই আত্মবিশ্বাস এনে দিয়েছে যে জনসাধারণের সমর্থনকে সঙ্গী করে ভারত রূপান্তরের কাজে সফল আমরা হবই। আমি জানি যে এই কাজ খুবই কঠিন। কিন্তু, এ কাজ যে করা সম্ভব সে বিষয়ে আমি নিশ্চিত। আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এই কাজ করা সম্ভব। মিঃ সার্কোজির সম্প্রতি প্রকাশিত ‘লা ফ্রান্সপোর লা ভাই’ গ্রন্থটির সাফল্যের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। কর্ণাটকের মান্ডিয়ায় এক বাস দুর্ঘটনায় যাত্রীদের প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, “কর্ণাটকের মান্ডিয়ায় বাস দুর্ঘটনায় আমি গভীরভাবে শোকাহত। মৃতদের পরিবার-পরিজনকে সমবেদনা জানি। ২৫ সেপ্টেম্বর, ২০১৫’তে রাষ্ট্রসঙ্ঘের ‘২০১৫ পরবর্তী উন্নয়নসূচি’ সম্পর্কিত এক শীর্ষ সম্মেলনে ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব মিঃ বান কি মুনের সঙ্গেও দেখা করবেন তিনি। বিশ্ব ব্যাঙ্কের প্রেসিডেন্ট মিঃ জিম ইয়ং কিমের সঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত এবং রাষ্ট্রসংঘের লিঙ্গসমতা ও নারী ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত সংস্থার মধ্যে এক মউ স্বাক্ষরের প্রস্তাব সোমবার অনুমোদিত হ’ল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এ সম্পর্কিতপ্রস্তাবটিতে আইনগত সংস্থান, নীতি ও কর্মসূচির মাধ্যমে লিঙ্গ ক্ষেত্রে সমতানিশ্চিত করার জন্য কেন্দ্রীয় পঞ্চায়েতি রাজ মন্ত্রককে প্রয়োজনীয় কারিগরি সহায়তাদেওয়া হবে, যাতে পঞ্চায়েতি রাজ প্রতিষ্ঠানগুলি সহ প্রশাসন ও পরিচালনের বিভিন্নক্ষেত্রকে আরও জোরদার করে তোলা যায়। নেপাল সফরে রওনা হওয়ার পূর্বে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি – “চতুর্থ বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিতে আমি ৩০-৩১ আগস্ট দু’দিনের সফরে কাঠমান্ডুতে থাকব। এই সম্মেলনে আমার যোগদান প্রতিবেশী দেশগুলির প্রতি ভারতের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে আমাদের সম্পর্কে আরও গভীরতর করার লক্ষ্যে আমাদের দৃঢ় অঙ্গীকারকেই প্রতিফলিত করে। সম্মেলন চলাকালীন বিমস্টেক নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমাদের আঞ্চলিক সহযোগিতা বৃদ্ধি, বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরও জোরদার করা ছাড়াও, এক শান্তিপূর্ণ ও সমৃদ্ধ ব্যাঙ্গোপসাগর অঞ্চল গড়ে তুলতে আমাদের সমবেত প্রয়াসগুলিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপারে আমার কথা হবে। বিমস্টেক সম্মেলনের পাশাপাশি বাংলাদেশ, ভুটান, মায়ানমার, শ্রীলঙ্কা ও থাইল্যান্ডের নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমার মতবিনিময় ও আলাপ-আলোচনার সুযোগ হবে। ভিয়েতনামেরপ্রতিরক্ষা মন্ত্রী জেনারেল এনগো জুয়ান লিচ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরসঙ্গে আজ সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রীগত সেপ্টেম্বর মাসে তাঁর ভিয়েতনাম সফরের কথা উল্লেখ করেন, যে সময়ে দু’দেশেরসম্পর্ক একটি পূর্ণাঙ্গ কৌশলগত অংশীদারিত্বের পর্যায়ে উন্নীত হয়। ভিয়েতনাম ভারতের‘অ্যাক্ট ইস্ট’ নীতির এক প্রধান স্তম্ভ বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বুধবার সাক্ষাৎ করলেন ভ্যাকসিন এলায়েন্স ‘গভি’র মুখ্য কার্যনির্বাহী আধিকারিক ড: সেথ বার্কলে| ভারতে টিকার উদ্ভাবন ও শিশুদের টিকাকরণ সম্পর্কে তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা করেন| এই আধুনিক টিকার মধ্যে রয়েছে দেশে ‘শুরু হতে যাওয়া’ টিকাকরণ কর্মসূচি যার মাধ্যমে ভারতে শিশুদের সবচেয়ে বেশি প্রাণঘাতক রোগ – নিওমোনিয়া ও ডায়রিয়া থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে| এর পাশাপাশি রয়েছে হাম-রুবেলা ও সার্ভিকাল ক্যান্সার-এর টিকাও| প্রধানমন্ত্রী তাঁর অসম সফর এবং সেখানকার কর্মসূচি প্রসঙ্গে কয়েকটি ট্যুইটবার্তায় বৃহস্পতিবার জানিয়েছেন যে, অসম রাজ্যের অধিবাসীদের সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্যতিনি বিশেষভাবে আগ্রহী। শ্রী মোদী তাঁর ট্যুইট বার্তায় বলেন, “কয়েকটি কর্মসূচিতে অংশগ্রহণ করারজন্য আগামীকাল আমি অসম সফর করব। অসমের জনসাধারণের সঙ্গে আলাপচারিতার এই সুযোগেরজন্য আমি আগ্রহের সঙ্গে অপেক্ষা করছি। এইমস্‌ এবং আইএআরআই – এই দুটি বড় প্রকল্পের আমি শিলান্যাস করব। অসম এবংউত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এই প্রকল্প দুটির মাধ্যমে। আগামীকাল উদ্বোধন হবে ঢোলা-সাদিয়া সেতুটির। এটি হ’ল আমাদের দেশেরসর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির অন্যতম। সন্ধ্যায় আমি খানাপাড়ায় এক জনসমাবেশে ভাষণ দেব। এর মধ্য দিয়ে আগামী বছর ২৩ জানুয়ারি নেতাজি সম্পর্কিত ফাইল প্রকাশের পথে আরও এক ধাপ এগিয়ে গেল কেন্দ্রীয় সরকার। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, এ বছর গত ৪ অক্টোবর নেতাজি সুভাষ চন্দ্র বসুর আত্মীয়-পরিজনদের প্রধানমন্ত্রী তাঁর ৭ রেস কোর্স রোডের বাসভবনে সাদর অভ্যর্থনা জানিয়ে বলেন, নেতাজি সম্পর্কে তাঁদের সকলের আবেগ ও আশা-আকাঙ্ক্ষার শরিক হতে পেরে তিনি এবং তাঁর সরকার বিশেষভাবে গর্বিত। নেতাজির পরিবার-পরিজনদের আশ্বাস দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে ফাইল প্রকাশের জন্য তাঁর সরকার যা যা করণীয় সমস্ত কিছুই করবে এবং এ ব্যাপারে অন্যান্য দেশের সঙ্গেও কথাবার্তা বলবে। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন যে নেতাজির জন্মবার্ষিকী ২৩ জানুয়ারি, ২০১৬-তে এই ফাইল প্রকাশ করার কাজ শুরু হবে। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা ও প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে রক্ষিত নেতাজি সম্পর্কিত ৩৩টি ফাইলের প্রথম সেট আজ জাতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের হাতে তুলে দেওয়া হল। নেতাজি সম্পর্কিত মোট ৫৮টি ফাইল ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণ করে সমগ্র জাতির কাছে উন্মুক্ত করা হবে। এ ব্যাপারে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক ও বিদেশ মন্ত্রক পৃথক পৃথকভাবে বিষয়টি দেখভাল করছে। আসিয়ান-এরসঙ্গে ভারতের সম্পর্ক স্থাপনের পথে মিঃ গোহ্‌ চোক টঙ্গ-এর যে বিশেষ ভূমিকা ও অবদানরয়েছে, একথাও স্বীকার করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্ধকারের মধ্যে যাঁরা তাঁদের জীবন অতিবাহিত করেননি, তাঁদের পক্ষে আলোর গুরুত্ব অনুধাবন করা অসম্ভব। গ্রামবাসীদের সঙ্গে আলাপচারিতাকালে শ্রী মোদী বলেন যে এনডিএ সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে হাজার হাজার গ্রাম আলোকিত হয়ে উঠেছে। পূর্ববর্তী সরকারের কাছে যা ছিল মিথ্যা প্রতিশ্রুতি মাত্র, সেখানে প্রত্যেকটি গ্রামকে বিদ্যুতায়িত করার জন্য নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে গেছে বর্তমান সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে দেশের প্রত্যেকটি বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে ‘প্রধানমন্ত্রী সহজ বিজলী হর ঘর যোজনা’র কাজ শুরু করা হয়েছে। এই কর্মসূচি রূপায়ণের মাধ্যমে এ পর্যন্ত বিদ্যুতের সুযোগ পৌঁছে গেছে ৮৬ লক্ষেরও বেশি বাড়িতে। বিদ্যুতের সুযোগ তাঁদের জীবনে কি ধরণের পরিবর্তন এনে দিয়েছে তা প্রধানমন্ত্রীর কাছে ব্যাখ্যা করেন দূর-দূরান্তের গ্রামগুলির সুফল গ্রহীতারা। তাঁদের জীবনধারণের মানও যে সার্বিকভাবে উন্নত হয়েছে সেকথা ব্যক্ত করেন অধিকাংশ সুফল গ্রহীতা। তাঁদের ঘর-বাড়ি আলোকিত করে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে তাঁরা ধন্যবাদ জানান। নাগাল্যান্ডরাজ্যের প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই রাজ্যটি বিশেষভাবেআশীর্বাদধন্যতার অনুপম প্রাকৃতিক সৌন্দর্য এবং পরিশ্রমী নাগরিকদের জন্য। ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদেরজন্মবার্ষিকীতে প্রণাম। এশিয়ান কনফেডারেশনের মহিলাদের বক্সিংচ্যাম্পিয়নশিপ-এর খেলায় স্বর্ণপদক জয়ী ভারতীয় মুষ্টিযোদ্ধা মেরি কম’কে অভিনন্দিতকরেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আপনারএই সাফল্যে ভারত নিজেকে সম্মানিত বোধ করছে”। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল হিমাচল প্রদেশ সফরে যাচ্ছেন। তিনি সেখানে রাজ্য সরকারের এক বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এই উপলক্ষে তিনি রাজ্য সরকারের সাফল্য নিয়ে তথ্যাদি প্রকাশ করবেন। কাংড়া জেলার ধর্মশালায় এক জনসভাতেও তিনি ভাষণ দেবেন। উরিরঘটনায় যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের শোক-সন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের উদ্দেশে গভীরসমবেদনাও প্রকাশ করেন তিনি। ওজন স্তরকেসুরক্ষিত রাখার উদ্দেশ্যে ভিয়েনা কনভেনশনের মন্ট্রিল চুক্তিতে অংশগ্রহণকারীসংশ্লিষ্ট পক্ষগুলির সাম্প্রতিক বৈঠকে আলাপ-আলোচনার ক্ষেত্রে ভারতের অবস্থানকেকর্ম-পরবর্তী অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। মহান সমাজ সংস্কারক ও সন্ত শ্রী রামানুজাচার্যের সহস্রতম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমাকে এই সুযোগদেওয়ায় আমি নিজেকে ভাগ্যবান মনে করছি। সন্ত শ্রী রামানুজাচার্যের জীবনের মূল বার্তা হ’ল সকলকে সামিল করে সমাজ,ধর্ম ও দর্শন। সন্ত শ্রী রামানুজাচার্য বিশ্বাস করতেন, যাই হোক আর যা হবে তা সবইভগবানের প্রকাশ। তিনি মানবদেহে ঈশ্বরের প্রকাশ আর ঈশ্বরের মধ্যে মানবত্বকে দর্শনকরেছিলেন। ঈশ্বরের সব ভক্তই তাঁর চোখে ছিলেন সমান। যখন জাতিভেদ এবং বর্ণাশ্রম প্রথা সমাজ ও ধর্মের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ বলে মনেকরা হ’ত আর প্রত্যেকেই ঐ বর্ণাশ্রমের উচ্চ-নীচ অনুযায়ী সমাজে নিজের স্থানটি উঁচুতেবা নীচুতে যাই হোক না কেন তা মেনে নিত, সন্ত শ্রী রামানুজাচার্য এর বিরুদ্ধেবিদ্রোহ করেছিলেন – তাঁর নিজের জীবনে আর ধর্মীয় শিক্ষাদানের মধ্য দিয়ে। আপনারা সকলেই জানেন যে, সন্ত শ্রী রামানুজাচার্য গরিবের চাহিদা পূরণেরসঙ্গে সামাজিক দায়িত্ববোধকে যুক্ত করেছিলেন। উদাহরণ স্বরূপ, তিনি মেলকোটের কাছেথোন্ডানুরে ২০০ একর জায়গা জুড়ে একটি কৃত্রিম সরোবর তৈরি করিয়েছিলেন। এই সরোবরটিমানব কল্যাণে সন্ত শ্রী রামানুজাচার্যের সুকর্মের জীবন্ত দৃষ্টান্ত হয়ে আজওবিদ্যমান। আজও এই ঝিলটি ৭০টিরও বেশি গ্রামীণ মানুষের পানীয় জল ও সেচের চাহিদামেটায়। আপনারাওনিজেদের জন্য পরিমাপযোগ্য ও বাস্তবে অর্জন সম্ভব এমন সব লক্ষ্য স্থির করুন, এইঅনুরোধ করি। ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইনের আরও চারটি নতুন শাখা অমরাবতী, ভোপাল, জোরহাট ও কুরুক্ষেত্রতে খুলতে ২০১৪ সালের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইন আইনে সংশোধনী আনার বিষয়ে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সম্মতি জানিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে আজ (১২ সেপ্টেম্বর) মন্ত্রিসভার বৈঠকে স্থির হয়েছে চারটি নতুন ডিজাইন প্রতিষ্ঠানকে আমেদাবাদের ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ ডিজাইনের মতো জাতীয় পর্যায়ের গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতি দেওয়া হবে। আইনে স্বল্প সংশোধনের মাধ্যমে এনআইডি বিজয়ওয়াড়ার নাম পরিবর্তন করে এনআইডি অমরাবতী রাখা ও প্রধান ডিজাইনার পদটিকে অধ্যাপক হিসেবে নামাঙ্কিত করার প্রস্তাবও রাখা হয়েছে। শেয়ারবাজারের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে ভারতের সিকিউরিটিজ অ্যান্ডএক্সচেঞ্জ বোর্ড অফ ইন্ডিয়া (সেবি) এবং ইরানের সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জঅর্গানাইজেশন (এসইও)-র মধ্যে এক মউ স্বাক্ষরের প্রস্তাবে আজ সম্মতি দেওয়া হয়প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভারবৈঠকে। মউটিস্বাক্ষরিত হলে শেয়ার বাজারের নিয়ন্ত্রক এই দুটি সংস্থার মধ্যে অর্থনৈতিক যোগাযোগও সহযোগিতা বিশেষভাবে প্রসার লাভ করবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর ফলে, দু’দেশের শেয়ারবাজারের বিকাশের বিষয়টিও ত্বরান্বিত হবে। এছাড়াও, ভারত ও ইরানের মধ্যে এ সম্পর্কিততথ্য বিনিময়ের ব্যবস্থাটিও আরও শক্তিশালী হয়ে ওঠার সম্ভাবনা রয়েছে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানে দেশব্যাপী জনগণের অংশগ্রহণ বাড়াতে এবং পরিচ্ছন্ন ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে বাপু’র স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার (১৫ সেপ্টেম্বর) ‘স্বচ্ছতাই প্রকৃত সেবা’ অভিযানের সূচনা করেন। ‘স্বচ্ছতাই প্রকৃত সেবা’ অভিযানের উদ্দেশ্য হল পরিষ্কার-পরিচ্চন্নতার লক্ষ্যে জনগণের অংশগ্রহণ আরও বাড়ানো। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের ১৭টি জায়গা থেকে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে মত বিনিময় করেন। একইভাবে, বিগত চার বছরে ২০টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে প্রকাশ্য স্থান শৌচকর্ম বর্জিত এলাকা হয়ে উঠেছে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, শৌচাগার বা ডাস্টবিনের সুবিধা প্রদান করাই যথেষ্ট নয়, পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকেও অভ্যাস হিসেবে গ্রহণ করা প্রয়োজন। তিনি আরও বলেন, এই অভ্যাস গড়ে তোলার জন্য সারা দেশের মানুষ এই অভিযানে সামিল হচ্ছেন। অসমের ডিব্রুগড়ের এক বিদ্যালয় পড়ুয়া তাদের স্কুল চত্বরকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা রাখার জন্য নিজেদের অবদানের কথা প্রধানমন্ত্রীকে শোনায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবসম্প্রদায় সামাজিক পরিবর্তনের দূত। যেভাবে তাঁরা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার বার্তা ছড়িয়ে দিয়েছে, তা প্রশংসার যোগ্য বলেও তিনি মন্তব্য করেন। স্বচ্ছতার লক্ষ্য নিজেদের উদ্যোগগুলির কথা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার জন্য গুজরাটের মেহসানার দুগ্ধ ও কৃষি সমবায় সমিতিগুলির সদস্যরাও একত্রিত হয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযানের দরুণ ডাইরিয়ার মতো রোগের সংখ্যা হ্রাস পেয়েছে। ভারতের প্রবেশদ্বার মুম্বাই থেকে বিশিষ্ট অভিনেতা অমিতাভ বচ্চন জানান, মুম্বাইয়ে একটি সমুদ্র সৈকতের পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার পাশাপাশি একাধিক পরিচ্ছন্নতা অভিযানে তিনি সামিল হয়েছেন। পরিচ্ছন্ন ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বেসরকারি ক্ষেত্রেরও বড় ভূমিকা রয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। লাদাকের প্যানগং হ্রদ থেকে ভারত-তিব্বত সীমান্ত পুলিশের (আইটিবিপি) জওয়ানরা এই মতবিনিময়ে অংশ নেন। প্রধানমন্ত্রী জওয়ানের সাহসিকতা ও দেশের প্রতি সেবার প্রশংসা করেন। কোয়েম্বাটোর থেকে সাধগুরু জাগ্‌গি বাসুদেব ও মতবিনিময়ে যোগ দেন। তিনি বলেন, এখানে স্বচ্ছতা অভিযানের ব্যাপারে বিশেষ উৎসাহ রয়েছে, যা তার বিভিন্ন জায়গায় সফরের সময় নজরে পড়েছে। ‘স্বচ্ছতাই প্রকৃত সেবা’ আন্দোলনের সূচনার জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বচ্ছ ভারত’ কোনও সরকার বা কোনও প্রধানমন্ত্রীর পরিচালিত অভিযান নয় বরং তা একটি সমগ্র জাতির আন্দোলন। ছত্তিশগড়ে দান্তেওয়াড়া এবং তামিলনাড়ুর সালেম থেকেও মহিলা স্বচ্ছাগ্রহীতা তাঁদের বিভিন্ন প্রয়াসের কথা প্রধানমন্ত্রীকে শোনান। পরিষ্কার-পরিচ্চন্নন্তার ক্ষেত্রে বিভিন্ন প্রয়াসের জন্য প্রধানমন্ত্রী ব্রহ্মকুমারকে ধন্যবাদ দেন। বেঙ্গালুরু থেকে মতবিনিময়ে যোগ দেন আধ্যাত্মিক গুরু শ্রী শ্রী রবিশঙ্কর। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী সমগ্র জাতিকে বিশেষ করে, যুবসম্প্রদায়কে উৎসাহিত করেছেন। উত্তরপ্রদেশের বিজনোরে গঙ্গা-পরিচ্ছন্নতার সঙ্গে যুক্ত স্বচ্ছাসেবীদের সঙ্গেও প্রধানমন্ত্রী মতবিনিময় করেন। মা গঙ্গাকে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার কাজে তাঁদের প্রয়াসগুলির প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। গঙ্গানদীর তীরে বসবাসকারী সমস্ত মানুষকে ‘স্বচ্ছতাই প্রকৃত সেবা’ আন্দোলন চলাকালীন এই নদীর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী স্বেচ্ছায় এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। আজমের শরিফ দরগা থেকে অসংখ্য ভক্ত এবং হরিয়ানার রিওয়ারি থেকে রেল কর্মীরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময় করেন। কোল্লাম থেকে মতবিনিময় অনুষ্ঠানে যোগ দেন মা অমৃতানন্দময়ী। মতবিনিময় অনুষ্ঠান শেষ করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী স্বচ্ছতাগ্রহীদের ভূমিকার প্রশংসা করে বলেন, তাঁদের ভূমিকা ইতিহাসে সর্বদাই স্মরণীয় হয়ে থাকবে। তিনি আরও বলেন, “পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতার প্রতি আমাদের আস্থা এবং দৃঢ় সঙ্কল্প গগনচুম্বি।” ২০১৮-র ১৫ থেকে ১৭ফেব্রুয়ারী ইসলামী ইরান প্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি মাননীয় ডঃ হাসান রৌহানি ভারতীয়প্রজাতন্ত্রের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে প্রথম রাষ্ট্রীয় সফরেএসেছিলেন। · এই সফরকালে ইসলামী ইরানপ্রজাতন্ত্রের রাষ্ট্রপতি ডঃ হাসান রৌহানির সঙ্গে ক্যাবিনেট মন্ত্রী, শীর্ষআধিকারিক এবং বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দের উচ্চপর্যায়ের প্রতিনিধি দলও এসেছিল। ১৭ইফেব্রুয়ারি রাষ্ট্রপতি ভবণে তাঁকে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্বর্ধনা জানানো হয়। সফরকারিঅতিথির সম্মানে ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী রামনাথ কোবিন্দ একটি আনুষ্ঠানিক নৈশ ভোজেরআহ্বান করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ও রাষ্ট্রপতি ডঃ হাসান রৌহানিরমধ্যে প্রতিনিধি পর্যায়ে আলোচনা হয়। ডঃ রৌহানি ২০১৮-র ১৫-১৬ ফেব্রুয়ারিহায়দরাবাদ সফর করেন। · দু দেশের মধ্যেদ্বি-পাক্ষিক, আঞ্চলিক এবং বহুপাক্ষিক বিষয়ে ব্যাপক ভিত্তির এবং গঠনমূলক আলোচনাহয়। উভয় দেশের নেতৃবৃন্দ স্মরণ করেন দুদেশের মধ্যে পারস্পরিক সুবিধার এই সম্পর্ক দুই সহস্রাব্দ ব্যাপি সাংস্কৃতিক সভ্যতাকেন্দ্রিক যোগাযোগের ভিত্তিতে গড়ে উঠেছে। উভয় পক্ষই একমত হয়, যে দু দেশের মধ্যেসম্পর্ক জোরদার হলে আঞ্চলিক ক্ষেত্রেও সহযোগিতা, শান্তি, সমৃদ্ধি এবং স্হিতিশীলতাজোরদার হবে। · প্রধানমন্ত্রীমোদী এবং রাষ্ট্রপতি রৌহানি নিম্নলিখিত নথি বিনিময় প্রত্যক্ষ করেন এবং গণমাধ্যমের সামনে যৌথভাবেবিবৃতি দেন : রাষ্ট্রপতি রৌহানি এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী সমস্তস্তরে প্রচলিত উচ্চ পর্যায়ের যোগাযোগ ঘনঘন সফর বিনিময়ের মাধ্যমে আরও জোরদার করারবিষয়ে একমত হন। এই পরিপ্রেক্ষিতে এ বছরের মধ্যেই ভারত-ইরান যৌথ কমিশনের এবং সমস্তকর্মীগোষ্ঠী, বৈদেশিক দপ্তরের মধ্যে আলাপ-আলোচনা, প্রতিরক্ষা এবং জাতীয় নিরাপত্তাপরিষদের মধ্যে আলোচনা, নীতি-পরিকল্পনা সংক্রান্ত আলোচনা এবং সংসদীয় ক্ষেত্রে সফরবিনিময়ের কাজ শুরু করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। · উভয়পক্ষই ভারত ও ইরানেরমধ্যে এবং এই অঞ্চলের মধ্যে বিভিন্ন পর্যায়ে যোগাযোগের উন্নয়নের লক্ষ্যে দুই দেশেরভূমিকার কথা স্বীকার করে নেয়। ২০১৭-র ডিসেম্বর মাসের প্রথম দিকে চাবাহার বন্দরেরপ্রথম পর্যায়ে সফল উদ্বোধন ; ইরান,ভারত এবং আফগানিস্তানের মধ্যে আন্তর্জাতিক পরিবহন ও যান চলাচল করিডর বিষয়েত্রিপাক্ষিক চুক্তির অনুমোদন এবং চাবাহার বন্দরের মাধ্যমে ভারত থেকে আফগানিস্তানেজাহাজ যোগে সহায়তা হিসেবে গম প্রেরণ, আফগানিস্তান, মধ্য এশিয়া ও তার বাইরেও যোগাযোগেরএক নতুন তোরণদ্বার খুলে দিয়েছে। উভয় পক্ষই চাবাহারে শাহিদ বেহেস্তি বন্দরের দ্রুতএবং সম্পূর্ণ কার্যকর করার প্রতি তাদের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে। ইরানের পক্ষ থেকেচাবাহার মুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলে, সার, পেট্রোরসায়ন এবং ধাতব পণ্যদ্রব্যের ক্ষেত্রেউভয় দেশের পক্ষে সুবিধা সম্পন্ন ভারতীয় বিনিয়োগকে স্বাগত জানানো হয়। · এইপরিপ্রেক্ষিতে উভয় দেশের নেতৃবৃন্দই শাহিদ বেহেস্তি বন্দরের লিজ চুক্তি অন্তর্বতীসময়ের জন্য স্বাক্ষরের বিষয়টিকে স্বাগত জানান। ত্রিপাক্ষিক চুক্তিতে নির্দিষ্টসময়ের মধ্যে যেসব কাজ সম্পন্ন করার কথা রয়েছে তা নিশ্চিত করা জন্য সমন্বয় পরিষদেরবৈঠক ডাকার কথাও বলা হয়। · চাবাহারবন্দরের সম্ভাবনা পরিপূর্ণভাবে সদ্ব্যবহারের জন্য এবং আফগানিস্তান ও মধ্য এশিয়ারসঙ্গে এই বন্দরের যোগাযোগের সুবিধার কথা মনে রেখে ভারত চাবাহার থেকে জাহেদানপর্যন্ত রেলপথের উন্নয়নের কাজে সহায়তা করতে রাজি হয়। সময় নির্দীষ্টভাবে এই প্রকল্পরূপায়ণের জন্য প্রযুক্তিগত কাজকর্ম এবং আর্থিক বিনিয়োগের বিষয়টি চূড়ান্ত করতেভারত ও ইরানের সংশ্লিষ্ট সংস্হাগুলি আলাপ-আলোচনা চালাচ্ছে। উভয় দেশের নেতৃবৃন্দইরেল ক্ষেত্রে সহযোগিতা, বিশেষ করে ইস্পাত নির্মিত রেল, টার্নআউট এবং ইঞ্জিন সরবরাহআরও বৃদ্ধির বিষয়ে একমত হন। · উভয়পক্ষই আন্তর্জাতিক উত্তর-দক্ষিণ পরিবহণ করিডর নির্মাণের প্রতি তাদের অঙ্গিকারব্যক্ত করে এবং চাবাহার বন্দরকে এই করিডর ব্যবস্হার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত করারপ্রয়োজনীয়তার উপর জোর দেয়। ইরানের পক্ষ থেকে তেহরানে এই করিডর বিষয়ে একটি সমন্বয়বৈঠক ডাকার কথা বলা হয়। আঞ্চলিক সংযোগ এবং অর্থনৈতিক বৃদ্ধির আঞ্চলিককেন্দ্রগুলিকে সংযুক্ত করার জন্য অতিরিক্ত পদক্ষেপ হিসাবে টিআইআর কনভেনশন এবংআশগাবাত চুক্তিতে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টিকে স্বাগত জানানো হয়। · উভয়দেশের নেতৃবৃন্দ কান্দলার দীনদয়াল বন্দর এবং চাবাহারের শাহিদ বেহেস্তি টার্মিনালেরছবি সহ একটি যৌথ ডাকটিকিট প্রকাশ করে। · চাবাহারেরমুক্ত বাণিজ্য অঞ্চলে ভারতের সরকারি-বেসরকারি ক্ষেত্রের বিনিয়োগ আকর্ষণের জন্যউপযুক্ত পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ইরানের পক্ষ থেকে ব্যবস্হা নেওয়ার আশ্বাসদেওয়া হয়। এই প্রেক্ষিতে ঠিক হয়েছে যে, ইরান এই অঞ্চলের দেশগুলি এবং অন্যান্যদেরনিয়ে চাবাহার বন্দরের অর্থনৈতিক এবং বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা নিয়ে একটি বাণিজ্যিকমেলার আয়োজন করবে। · উভয়পক্ষেই সামুদ্রিক যোগাযোগেরক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়াবার সম্ভাবনা খতিয়ে দেখতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে। প্রতিরক্ষাক্ষেত্রে বিশেষ করে দুদেশের নৌবাহিনীর যুদ্ধ জাহাজগুলিকে নিজেদের বন্দরগুলিতে নোঙরকরার অনুমতি দেওয়া, প্রতিরক্ষাকারীদের প্রশিক্ষণ এবং প্রতিরক্ষা সংক্রান্তপ্রতিনিধি দলের নিয়মিত সফর বিনিময়ের বিষয়ে আলোচনার জন্য উভয়পক্ষ রাজি হয়েছে। · উভয়পক্ষই দুদেশের মধ্যেশাস্তিপ্রাপ্ত ব্যক্তিদের হস্তান্তর বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি রূপায়নের কাজেরঅগ্রগতিতে সন্তোষ ব্যক্ত করেছে, দুদেশের মধ্যে প্রত্যর্পণ চুক্তি এবং দেওয়ানি এবংবাণিজ্যিক বিষয়ে পারস্পরিক আইনি সহযোগিতা চুক্তি নিয়ে উভয় পক্ষই সমঝোতায় পৌঁছেছে। আঞ্চলিকও আন্তর্জাতিক ইস্যুগুলি · দুই দেশের নেতৃবৃন্দ আঞ্চলিকও আন্তর্জাতিক বিষয় নিয়ে মত বিনিময় করেছেন। বহুপাক্ষিকতার ধারনা জোরদার হওয়াররাষ্ট্রপতি রৌহানি আন্তর্জাতিক মঞ্চে আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহনের জন্য ভারতেওআশা-আকাঙ্খার স্বীকৃতি দিয়েছেন। দুই নেতাই এক শক্তিশালী রাষ্ট্রসংঘ ও বর্তমানভূ-রাজনৈতিক বাস্তবতার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে নিরাপত্তা পরিষদের দ্রুত সংস্কারেরপ্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দিয়েছেন। উভয় নেতাই, বহুপাক্ষিক আর্থিক সংস্হাগুলিকেশক্তিশালী করা ও তাদের সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সিদ্ধান্তগ্রহণের প্রক্রিয়ায় উন্নয়নশীল দেশগুলির অংশগ্রহণ ও বক্তব্য হাজির করারক্ষমতাবৃদ্ধির ওপর জোর দেন। · সন্ত্রাসবাদের চ্যালেঞ্জ এবংহিংস্র জঙ্গিবাদের তত্ত্বকে মোকাবিলা করার জন্য উভয় নেতাই, সমস্ত ধরনের সন্ত্রাসবাদমোকাবিলায় তাদের দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করে কোন কারনেই কোনো ধরনের সন্ত্রাসকে মেনেনা নেওয়ার কথা বলেছেন। তারা মনে করেন যে সন্ত্রাসবাদ ও তাদের সংগঠন এবংনেটওয়ার্কগুলি নির্মূল করলেই চলবে না, কোন পরিস্হিতিতে সন্ত্রাস ও তার আদর্শেরঅনুকূল পরিষেবা গড়ে ওঠে, তারও মোকাবিলা করা দরকার। কোনো ধর্ম, জাতিয়তাবাদ বাজনগোষ্ঠির সঙ্গে সন্ত্রাসবাদকে যুক্ত করা প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে তারা অভিমত প্রকাশকরেছেন। তাঁরা সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠী বা ব্যক্তিকে সাহায্য না করার আহ্বান জানিয়ে যেসব রাষ্ট্র এইসব গোষ্ঠীগুলিকে পরোক্ষ বা প্রত্যক্ষভাবে সাহায্য সহযোগিতা করে বাসন্ত্রাসবাদকে মদত দেয় তাদের নিন্দা করার আহ্বান জানিয়েছেন। সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলারক্ষেত্রে আংশিক পদক্ষেপ বা নির্বাচিত পদক্ষেপ এর প্রথা বন্ধ করার জন্য আন্তর্জাতিকগোষ্ঠীর কাছে আহ্বান জানিয়ে বলেছেন যে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদে সন্ত্রাসবাদমোকাবিলায় আন্তর্জাতিক কনভেনশন নিয়ে চুক্তিটি চুড়ান্ত করে তা কার্যকর করাপ্রয়োজন। · ‘ ২০১৩ সালে হিংসা এবংজঙ্গীপনার বিরুদ্ধে বিশ্ব ’ শীর্ষক ইরানের রাষ্ট্রপতির বক্তব্যের ভিত্তিতে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদেগৃহীত প্রস্তাবটিকে অনুমোদন করেছেন এবং সমস্ত ধরনের সন্ত্রাসবাদ ও তাদের সমর্থনেআন্দোলন, বিশেষ করে জঙ্গী গোষ্ঠীগুলির আর্থিক সহায়তা সম্পূর্ণ বন্ধ করার আহ্বানজানিয়েছেন। · ভারতের পক্ষ থেকে পরমানুশক্তির প্রসাররোধ ব্যবস্হা এবং আন্তর্জাতিক শান্তি স্থিতিশীলতা এবং নিরাপত্তারক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়া এবং রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে অনুমোদিতযৌথ সার্বিক পরিকল্পনা যথাযথভাবে রূপায়নে জোর দেওয়া হয়েছে। এই প্রেক্ষিতেতাঁরা এই অঞ্চলের দেশগুলির মধ্যে সড়ক যোগাযোগ বাড়ানোর জন্য জমি সংক্রান্ত বাধাদুর করতে পদক্ষেপের জন্য সংশ্লিষ্ট দেশগুলির কাছে আহ্বান জানিয়েছেন। · রাষ্ট্রপতি রৌহানি, ভারতসফরকালে, তাঁর ও তাঁর প্রতিনিধিদলের সঙ্গে আতিথেয়তা ও সৌজন্য প্রদর্শনের জন্যকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। তিনি ভারতের রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীকে ইরান সফরের জন্যআমন্ত্রন জানান। ভারতের অভিন্ন হৃদয় বন্ধু আজ আমাদের মধ্যে উপস্থিত হয়েছেন, যা অত্যন্ত আনন্দের বিষয়। ভারত তাঁর কাছে নতুন নয়, তবে, রাষ্ট্রপতি হিসেবে এটিই তাঁর প্রথম ভারত সফর। আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের এক বিশেষ মুহূর্তে তাঁর ভারত সফর হচ্ছে। এ বছর মহাত্মা গান্ধীর জন্মের সার্ধ শতবার্ষিকী। গত বছর ছিল নেলসন ম্যান্ডেলার জন্মবার্ষিকী। এমনকি, গত বছর আমাদের কূটনৈতিক সম্পর্কের হীরক জয়ন্তী উদযাপিত হয়েছে। রাষ্ট্রপতি রামাফোসা বিশেষ এই মুহূর্তে ভারত সফরে আসায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। রাষ্ট্রপতি রামাফোসা আমাদের যে শ্রদ্ধা এবং সম্মান জানিয়েছেন, তার জন্য আমরা কৃতজ্ঞ। বিশেষ এই মুহূর্তে সমগ্র ভারতও তাঁর কাছে কৃতজ্ঞ। আমার সঙ্গে রামাফোসার প্রথম দেখা হয় ২০১৬-তে দক্ষিণ আফ্রিকায় যখন আমি সে দেশ সফর করছিলাম। সে সময়ে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকার উপ-রাষ্ট্রপতি ছিলেন। আমাদের দু’জনের প্রথম বৈঠকে আমি ভারতের প্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ও অনুরাগ উপলব্ধি করেছিলাম। গত বছর দক্ষিণ আফ্রিকায় আয়োজিত ব্রিক্‌স শীর্ষ সম্মেলনের সময়ও আমি তাঁর উষ্ণ আতিথেয়তা পেয়েছি। আমি, রাষ্ট্রপতি ও তাঁর প্রতিনিধিদলকে ভারতে আন্তরিক স্বাগত জানাই। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে আজ আমার মতবিনিময়ের সময় আমাদের দুই দেশের সম্পর্কের সমস্ত দিক নিয়ে আমরা পর্যালোচনা করেছি। আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্ক ক্রমশ নিবিড় থেকে নিবিড়তর হচ্ছে। আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের পরিমাণ ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে। এ বছর ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’ শীর্ষ সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকা অংশীদার দেশ হিসেবে যোগ দেয়। দক্ষিণ আফ্রিকায় বিনিয়োগ বাড়াতে রাষ্ট্রপতি রামাফোসা যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন, ভারতীয় সংস্থাগুলি তাতে সক্রিয়ভাবে অংশগ্রহণ করছে। দক্ষিণ আফ্রিকার দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচিগুলিতেও আমরা অংশীদার হয়েছি। শীঘ্রই সে দেশের প্রিটোরিয়াতে গান্ধী-ম্যান্ডেলা দক্ষতা প্রতিষ্ঠান স্থাপন করা হবে। আমরা দু’জনেই এই সম্পর্ককে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই লক্ষ্যে, আর কিছু সময় পরেই আমরা দু’জনেই উভয় দেশের শিল্পপতিদের সঙ্গে মিলিত হব। আমরা যদি বিশ্ব মানচিত্রে চোখ রাখি, তাহলে দেখতে পাবো ভারত মহাসাগরের খুব গুরুত্বপূর্ণ দুটি জায়গায় এই দুই দেশের অবস্থান। এই দুই গণতান্ত্রিক দেশেই রয়েছে বিপুল বৈচিত্র্যের সমাহার। আমরা মহাত্মা গান্ধী ও নেলসন ম্যান্ডেলার মহান ঐতিহ্যের উত্তরসূরী। তাই, সমগ্র বিশ্ব আমাদের এই দুই দেশকে প্রায় একই দৃষ্টিভঙ্গি নিয়ে দেখে থাকে। ব্রিক্‌স, জি-২০, ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চল সংগঠন, ইবসা-র মতো বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা ও সমন্বয় অত্যন্ত মজবুত। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের ক্ষেত্রেও আমরা একযোগে কাজ করছি। রাষ্ট্রপতি রামাফোসার এই ভারত সফরের আরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য হল প্রথম “গান্ধী-ম্যান্ডেলা ফ্রিডম লেকচার”-এ তিনি ভাষণ দেবেন। কেবল আমিই নই, সমগ্র ভারত এমনকি দক্ষিণ আফ্রিকাও মাননীয় রাষ্ট্রপতির ভাষণ শোনার অধীর অপেক্ষায় রয়েছে। সাধারণতন্ত্র দিবসে রাষ্ট্রপতি রামাফোসার উপস্থিতি এবং প্রধান অতিথি হিসাবে তাঁর যোগদান আমাদের দুই দেশের অভিন্ন অঙ্গীকারকে আরও মজবুত করবে। কিন্তু বর্তমানে আমরাজেনেছি যে, তা নির্ভর করে প্রাতিষ্ঠানিক গুণমান ও চিন্তাভাবনার ওপর। গত বছরের প্রথমদিকে একটি নতুন প্রতিষ্ঠানের জন্ম হয়, যা পরিচিত ‘ভারতের রূপান্তরের লক্ষ্যে জাতীয়প্রতিষ্ঠান’ অর্থাৎ ‘নীতি’ রূপে। ভারতে রূপান্তরের পথ নির্দেশক এক বিশেষ প্রাতিষ্ঠানিককাঠামো রূপে নীতিকে গড়ে তোলা হয়েছে অনেক চিন্তাভাবনার পর। নীতির কাজকর্মের মধ্যেরয়েছে : – বহির্বিশ্বের অর্থাৎ আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ ওপেশাদার ব্যক্তিদের সঙ্গে সরকারের যোগসূত্র স্থাপন করা। – বিভিন্ন সূত্র থেকে সংগৃহীত চিন্তাভাবনাকে নীতি রচনার সঙ্গেযুক্ত করা। ভারত সরকার এবং বিভিন্ন রাজ্য সরকারের রয়েছেএক দীর্ঘ প্রশাসনিক ঐতিহ্য। প্রাচীনকাল থেকেই দেশীয় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের মতও চিন্তাভাবনাগুলি যুক্ত ও মিলিত হয়েছে এই ঐতিহ্যের সঙ্গে। এই প্রশাসনিক ঐতিহ্যঅনেক দিক থেকেই ভারতের প্রভূত উপকার করেছে। সর্বোপরি বৈচিত্র্যের গরিমার মধ্য দিয়েগড়ে ওঠা এই দেশে তা রক্ষা করেছে ঐক্য ও সংহতি, গণতন্ত্র ও যুক্তরাষ্ট্রীয়তা। এইপ্রাপ্তি বা সাফল্য কোনও অংশেই কম নয়। তা সত্ত্বেও আমরা এমন এক যুগে বর্তমানে বাসকরি যেখানে পরিবর্তন ঘটে চলেছে প্রতিনিয়ত। ভেতর এবং বাইরের নানা কারণে পরিবর্তন আমাদেরআনতেই হবে। প্রত্যেকটি দেশেরই রয়েছে নিজস্ব শক্তি, সম্পদ ও অভিজ্ঞতা। ৩০ বছর আগেএকটি দেশ অন্তর্মুখী হয়ে থাকতে পারত এবং সেখান থেকেই সে তার সমস্যার সমাধান খুঁজেনিতে পারত। কিন্তু, বর্তমান বিশ্বে দেশগুলি পরস্পর নির্ভরশীল এবং একে অপরের সঙ্গেযুক্ত। বহির্বিশ্ব থেকে বিচ্ছিন্ন থেকে কোনও দেশই এখন আর এককভাবে উন্নয়নের দিশাখুঁজে পেতে পারে না। তাই, প্রত্যেকটি দেশকেই এখন কাজ করতে হয় বিশ্ব মানের দিকেলক্ষ্য রেখে, অন্যথায় ঐ দেশ পিছিয়ে পড়তে বাধ্য। নানা অভ্যন্তরীণ কারণেও পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তাঅনস্বীকার্য। আমাদের দেশের তরুণ প্রজন্মের চিন্তাভাবনা ও আশা-আকাঙ্খা এতটাই ভিন্নধরণের যে, সরকারের এখন অতীতকে আঁকড়ে ধরে থাকলেই চলবে না। এমনকি, পারিবারিকক্ষেত্রেও নবীন ও প্রবীণের সম্পর্ক এখন অনেকটাই বদলে গেছে। আরঠিক এই কারণেই যোগাযোগ স্থাপনের ক্ষেত্রে এবং ক্রমবর্ধমান প্রত্যাশা পূরণের কাজেসরকারের কাছে চ্যালেঞ্জের সংখ্যাও এখন কম নয়। পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জকে যদি ভারতকে গ্রহণকরতে হয়, তা হলে শম্বুকগতিতে এগিয়ে গেলে চলবে না। প্রয়োজন তাতেও পরিবর্তন নিয়েআসার। এই কারণেই আমার লক্ষ্য হল – ভারতের দ্রুতরূপান্তর, মন্থর গতির বিবর্তন নয়। · প্রশাসনতথা পরিচালনের রূপান্তর বিনা ভারতের রূপান্তর কখনই সম্ভব হতে পারে না। · মানসিকতারপরিবর্তন না ঘটলে প্রশাসন তথা পরিচালন ব্যবস্থাতে পরিবর্তন আসতে পারে না। · রূপান্তরমুখীচিন্তাভাবনা ছাড়া মানসিকতার পরিবর্তনও সম্ভব নয়। উনিশ শতকের প্রশাসনিক ব্যবস্থার ওপর নির্ভর করে একবিংশ শতাব্দীরদিকে আমরা পা বাড়াতে পারি না। আকস্মিককোনও আঘাত বা সংকটের মধ্য দিয়ে সাধারণত প্রশাসনিক চিন্তাভাবনা ও মানসিকতারক্ষেত্রে মৌলিক পরিবর্তন ঘটে থাকে। ভারতের সৌভাগ্য যে, গণতান্ত্রিক স্থিতিশীলতাতার রয়েছে। এই ধরণের কোনও ঘটনা না ঘটলেও রূপান্তরমুখী পরিবর্তনের লক্ষ্যেসর্বশক্তি নিয়োজিত করার কাজে আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। ব্যক্তি মানুষ হিসেবে বইকিংবা প্রবন্ধ-নিবন্ধ পাঠ করে আমরা নতুন নতুন নতুন মত ও চিন্তাভাবনার শরিক হতেপারি। বই আমাদের মনের জানালাগুলি উন্মুক্ত করে দেয়। তবে, আমরা যদি আমাদেরচিন্তাভাবনা আর সকলের মধ্যে ছড়িয়ে না দিই, তা হলে তা একান্তভাবে বন্দী হয়ে থাকেব্যক্তি-মানুষের মনেই। আমরা প্রায়শই নতুন নতুন মত ও চিন্তাভাবনার কথা শুনে থাকিএবং সেগুলি আমরা হৃদয়ঙ্গমও করতে পারি। এই কাজের জন্য নতুন নতুন চিন্তাভাবনাকে আমাদের গ্রহণ করতে হবেসম্মিলিতভাবে, এককভাবে নয়। আর এজন্য প্রয়োজন বিশেষ উদ্যম ও প্রচেষ্টার সমন্বয়। এই সমস্ত মঞ্চে যে মত ও চিন্তাভাবনা আমরাসংগ্রহ করি, তা যুক্ত করে থাকি নীতির সঙ্গে। ‘ভারতেরূপান্তর’ বক্তৃতামালার এটাই হল উদ্দেশ্য। এটি হল এমনই একটি সিরিজ, যেখানে আমরাঅংশগ্রহণ করব শুধুমাত্র ব্যক্তি-মানুষ হিসাবেই নয়, বরং এক মিলিত দল বা শক্তিহিসেবে যা পরিবর্তন ঘটাতে সক্ষম। বিশিষ্টও প্রখ্যাত ব্যক্তিদের জ্ঞান ও প্রজ্ঞার শ্রেষ্ঠ দিকগুলি আমাদের গ্রহণ করতে হবে।বিশ্বে নিজেদের দেশকে এক সম্মানের আসনে প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে জন্য তাঁরা আমাদেরঅনেকেরই জীবনে পরিবর্তন সম্ভব করে তুলেছেন বা এই প্রক্রিয়ায় প্রভাব স্থাপন করেছেন। সিরিজেরপ্রথম বক্তৃতাই হল এটিই। আপনাদের প্রত্যেককেই ফিডব্যাক লেখার জন্য একটি করে ফর্মদেওয়া হয়েছে। এই প্রক্রিয়াকে আরও উন্নত করে তোলার কাজে সাহায্য করার জন্য আপনাদেরখোলাখুলি ও বিস্তারিত মতামত সংগ্রহ করার জন্য আমি অপেক্ষা করব। ভারত এবংআন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞ ও বিশিষ্ট ব্যক্তিদের নাম প্রস্তাব করার জন্য আমিআপনাদের কাছে আবেদন জানাচ্ছি। একই সঙ্গে আমি অনুরোধ জানাচ্ছি সরকারের সচিবপদাধিকারীদের কাছে এক সপ্তাহের মধ্যে এর ফলাফল জানানোর জন্য তাঁদের মন্ত্রকেরঅংশগ্রহণকারী সদস্যদের সঙ্গে আলোচনা বৈঠকের ব্যবস্থা করার জন্য। আমার একথা বলারউদ্দেশ্য হল, আজ এই পর্বের অনুষ্ঠান থেকে যে সমস্ত চিন্তাভাবনা সংগৃহীত ও সংকলিতহবে তার ভিত্তিতে প্রত্যেকটি গ্রুপের জন্যই সুনির্দিষ্ট কর্মসূচি ছকে ফেলা। যদিসম্ভব হয়, মন্ত্রীদেরও আমি অনুরোধ জানাব, বিভিন্ন পর্বের আলোচনায় অংশগ্রহণের জন্য। তাই, যথাযোগ্য মর্যাদার সঙ্গেই সিঙ্গাপুরেরউপ-প্রধানমন্ত্রী শ্রী থরম্যান সন্মুগরত্নম’কে নিয়েই আমরা এই সিরিজের উদ্বোধন করতেপেরেছি। তিনি হলেন একজন বিদগ্ধ ব্যক্তি এবং সরকারি নীতি রচয়িতা। উপ-প্রধানমন্ত্রীছাড়াও তিনি হলেন অর্থনৈতিক ও সামাজিক নীতি দপ্তরের মন্ত্রী তথা অর্থমন্ত্রী এবংসিঙ্গাপুরের অর্থ সংক্রান্ত সরকারি প্রতিষ্ঠানের একজন চেয়ারম্যান। অতীতে শ্রমশক্তিদপ্তরের মন্ত্রী, অর্থ সংক্রান্ত দ্বিতীয় মন্ত্রী এবং শিক্ষা মন্ত্রীর দায়িত্বওতিনি পালন করে এসেছেন। লন্ডন স্কুলঅফ ইকনমিক্স থেকে অর্থনীতিতে স্নাতক হন তিনি। পরে, অর্থনীতিতে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিলাভ করেন কেম্ব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে। হার্ভাড বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জনপ্রশাসনবিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিও তিনি অর্জন করেছেন। তাঁর বিশিষ্ট কাজ ও সেবার জন্যতাঁকে সম্মানিত করা হয় হার্ভাডে। শ্রীসন্মুগরত্নম হলেন বিশ্বের প্রথম সারির বুদ্ধিজীবীদের অন্যতম। তাঁর চিন্তাভাবনারপ্রসার ও ব্যপ্তির একটি উদাহরণ আমি এখানে তুলে ধরছি। সিঙ্গাপুরের বর্তমান অর্থনীতিঅনেকাংশেই সমুদ্রপথে পণ্য পরিবহণের ওপর নির্ভরশীল। কিন্তু, বিশ্ব উষ্ণায়ন যদিমেরুপ্রদেশের তুষারকে গলতে সাহায্য করে এবং নতুন সমুদ্রপথ আবিষ্কৃত হয়, তা হলেসিঙ্গাপুরের প্রাসঙ্গিকতা অনেকটাই ম্লান হয়ে যাবে। বন্ধুগণ,যে সাফল্য ও সম্মান অর্জন করেছেন শ্রী সন্মুগরত্নম তার তালিকা দীর্ঘ। কিন্তু, এখনআমরা তাঁর কাছ থেকে কিছু কথা শুনতে আগ্রহী। “আজশ্রমিক দিবসে আমরা সম্মান জানাই সেই সমস্ত স্থিরসঙ্কল্প শ্রমিক-কর্মচারীদের যাঁদেরকঠোর পরিশ্রমের এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে ভারতের অগ্রগতিতে। “গর্ভদান (নিয়ন্ত্রণ) বিল, ২০১৬” বিল পেশ করার অনুমতি দিল কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ এই মর্মে একটি সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। প্রস্তাবিত বিলের খসড়ায় কোন স্থায়ী কাঠামো গড়ে তোলার কথা বলা হয়নি। এইউদ্দেশ্যে নতুন কোন পদ সৃষ্টিরও উল্লেখ নেই খসড়াটিতে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে শ্রী লক্ষ্মণরাও ইনামদারের জন্ম শতবর্ষউপলক্ষে আয়োজিত সহকার সম্মেলনে যোগ দেন। অনুষ্ঠানেভাষণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশ হচ্ছে ‘বহুরত্ন বসুন্ধরা’, যেখানে দেশেরবিভিন্ন অঞ্চলে ও বিভিন্ন সময়ে বহু মানুষ দেশের জন্য বিরাট অবদান রেখে গেছেন। শ্রী মোদী বলেন, উকিল সাহেব – লক্ষ্মণরাও ইনামদার–ছিলেন এরকমই এক মানুষ। শ্রী ইনামদার জীবনে এই নীতিতে বিশ্বাস করতেন এবং তাঁর জীবন মানুষেরকাছে অনুপ্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। এই লক্ষ্য অর্জনে সমবায়আন্দোলন বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। সমবায়আন্দোলনের মূল সুরটিকে ধরে রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, এইআন্দোলন এখনও গ্রামাঞ্চলে কার্যকর রয়েছে। তিনি শ্রী ইনামদারের মন্ত্র ‘বিনাসংস্কার, নেহি সহকার’-এর কথা তুলে ধরেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন যে, বর্তমানে কৃষকরা খুচরো বাজার থেকে জিনিসপত্র কেনেন এবং পাইকারি বাজারেতাঁদের উৎপাদিত পণ্যদ্রব্য বিক্রি করেন। এই প্রক্রিয়াকে পরিবর্তন করেমধ্যস্বত্ত্বভোগীদের সরিয়ে কৃষকদের আয় বাড়ানোর কথা প্রধানমন্ত্রী বলেন। দুগ্ধসমবায়গুলির উদাহরণ তুলে ধরে শ্রী মোদী বলেন যে, সমবায় আন্দোলনের মধ্যে মানুষেরসমস্যার সমাধানের ক্ষমতা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ভারতীয় সমাজের সঙ্গে সমবায়আন্দোলনের এক স্বাভাবিক যোগাযোগ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই প্রসঙ্গে নিমেরপ্রলেপযুক্ত ইউরিয়া, মৌমাছি পালন এবং সামুদ্রিক লতার চাষের কথা তুলে ধরে, এইসবক্ষেত্রে সমবায় আন্দোলন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে বলে উল্লেখ করেন। মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী রামবিলাস পাসোয়ানজি, শ্রী সি আর চৌধুরীজি,আঙ্কটাড-এর মহাসচিব ডঃ মুখিসা কিটুই এবং এখানে উপস্থিত অন্যান্য বিশিষ্টজন। প্রথমেই ক্রেতা স্বার্থ সুরক্ষার মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আঞ্চলিকসম্মেলনে উপস্থিত থাকার জন্য আমি আপনাদের সকলকেই অভিনন্দন জানাই। দক্ষিণ এশিয়া,দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং পূর্ব এশিয়ার সবকটি দেশের প্রতিনিধিরা এই সম্মেলনে মিলিতহয়েছেন। এই অনুষ্ঠানে আপনাদের সকলকেই আমি স্বাগত জানাই। দক্ষিণ এশিয়ায় এই ধরণের সম্মেলন এই প্রথম আয়োজিত হচ্ছে। এই ধরণের একটিগুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে এই মঞ্চে নিয়ে আসার জন্য ভারতের উদ্যোগ ও প্রচেষ্টাকে সমর্থনজানানোর পাশাপাশি এক সক্রিয় ভূমিকা পালন করার জন্য আঙ্কটাড-এর প্রতি আমি কৃতজ্ঞ। বহুশতাব্দী ধরেই এই অঞ্চলকে অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে যুক্ত করার কাজে উপকূলবর্তীঅঞ্চলের অর্থনীতি এক গুরুত্বপূর্ণ অবদান সৃষ্টি করেছে। এক দেশ থেকে অন্য দেশে সফরএবং চিন্তাভাবনা বিনিময়ের মাধ্যমে এই অঞ্চলের প্রত্যেকটি দেশ দু’দিক থেকেই লাভবানহয়েছে। তাই বর্তমানে শুধুমাত্র অর্থনীতি নয়, সংস্কৃতির দিক থেকেও আমরা এক মিলিতঐতিহ্যের প্রতীক। এইপরিস্থিতিতে ক্রেতা স্বার্থ সুরক্ষা হ’ল এমনই একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়, যা এইঅঞ্চলের বাণিজ্য প্রচেষ্টাকে শুধুমাত্র প্রসারিতই করবে না, সেইসঙ্গে তাকে আরওশক্তিশালীও করে তুলবে। দেশের নাগরিকদের প্রয়োজন ও চাহিদার বিষয়গুলি আমরা বাস্তবে ততটা অনুভব ওউপলব্ধি করি এবং তাঁদের সমস্যার মোকাবিলায় আমরা আমাদের সাধ্য মতো কতটা চেষ্টা করতেপারি, তারই প্রতিফলন ঘটবে আজকের এই অনুষ্ঠানটিতে। মনে রাখতে হবে, প্রত্যেক নাগরিকইহলেন একজন ক্রেতা বা ভোক্তা এবং এই কারণেই আমাদের সমবেত সংকল্পবদ্ধতার এক প্রতীকহয়ে উঠবে আজকের এই সম্মেলন। এই সমগ্র প্রচেষ্টা ও প্রক্রিয়ায় এক বিশেষ অংশীদার হয়ে উঠতে রাষ্ট্রসঙ্ঘযেভাবে এগিয়ে এসেছে, তা আমাদের পক্ষে খুব উৎসাহের বিষয়। ১৯৮৫ সালে প্রথমবার ক্রেতাসুরক্ষার ওপর রাষ্ট্রসঙ্ঘের নীতি-নির্দেশিকা রচিত হয়েছিল। দু’বছর আগে তা আবারসংশোধিতও হয়েছে। এই সংশোধন প্রচেষ্টায় এক সক্রিয় ভূমিকা পালন করেছে ভারত। বিকাশশীলদেশগুলিতে ভোগ্যপণ্যের নিরন্তর যোগান, বৈদ্যুতিন বাণিজ্য এবং আর্থিক পরিষেবারক্ষেত্রে এই নীতি-নির্দেশিকা একান্ত জরুরি। বন্ধুগণ, বহুকাল ধরেই ক্রেতা সুরক্ষার বিষয়টি ভারতের প্রশাসনিক ব্যবস্থারএক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হয়ে উঠেছে। হাজার হাজার বছর পূর্বে রচিত আমাদের বেদ শাস্ত্রেক্রেতা সুরক্ষার বিষয়টির উল্লেখ রয়েছে। আপনারা শুনলে হয়তো আশ্চর্য হবেন যে,প্রায় আড়াই হাজার বছর পূর্বে কৌটিল্যের সময় শাসন ব্যবস্থাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলব্যবসা-বাণিজ্যর নিয়ন্ত্রণ এবং ক্রেতা সাধারণের সুরক্ষার বিষয়ে। কৌটিল্যের সময়সাংগঠনিক কাঠামোতে যে সমস্ত পদ সৃষ্টি করা হয়েছিল, তা বর্তমানে বাণিজ্য অধিকর্তাএবং পণ্য ও পরিষেবার মান রক্ষার কাজে নিযুক্ত প্রশাসকেরই সমতুল্য। বন্ধুগণ, ক্রেতা সাধারণকে আমরা ঈশ্বর জ্ঞান করি। ব্যবসা-বাণিজ্যেরবিষয় বা প্রকৃতি যাই হোক না কেন, ক্রেতা বা গ্রাহক সন্তুষ্টির বিষয়টিকে প্রধানগুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন। বন্ধুগণ, দেশের চাহিদা এবং বাণিজ্যিক কাজকর্মের দিকে লক্ষ্য রেখে আমরাবর্তমানে এক নতুন ক্রেতা সুরক্ষা আইন বলবৎ করার চেষ্টা করছি। প্রস্তাবিত আইনেক্রেতা সাধারণের ক্ষমতায়নের ওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে। ন্যূনতম ব্যয়ে একসুনির্দিষ্ট সময়কালের মধ্যে ক্রেতাদের ক্ষোভ ও অভিযোগ নিরসনে সংশ্লিষ্ট নিয়ম-কানুনআরও সরল করে তোলা হচ্ছে। বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপনের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণেরসংস্থানও থাকবে তাতে। প্রশাসনিক ক্ষমতাসম্পন্ন এক কেন্দ্রীয় ক্রেতা সুরক্ষাকর্তৃপক্ষ গঠন করা হবে দ্রুত প্রতিকার সম্ভব করে তুলতে। সাধারণ ঘরবাড়ির ক্রেতা সাধারণের জন্য আমরা এক আবাসন নিয়ন্ত্রণ আইন কার্যকরকরেছি। এমনকি, ফ্ল্যাটের আয়তন নিয়েও তখন অনেক রকম বিভ্রান্তি ছিল। কিন্তু বর্তমানেএক কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে সরকারিভাবে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে যে, ক্রেতাদেরকাছ থেকে সংগৃহীত অর্থের ৭০ শতাংশই একটি বিশেষ অ্যাকাউন্টে জমা রাখতে হবে এবং তাশুধুমাত্র সংশ্লিষ্ট ঐ প্রকল্পটি নির্মাণেই ব্যয় করতে হবে। একইভাবে চালু করা হয়েছে ভারতীয় মান নিয়ন্ত্রক আইনটি। বর্তমানে সাধারণ মানুষবা ক্রেতাদের স্বার্থে পণ্য ও পরিষেবা যোগানের ক্ষেত্রে বাধ্যতামূলকভাবে শংসাপত্রওথাকা চাই। ভারত সাম্প্রতিককালে পণ্য ও পরিষেবা কর জিএসটি চালু করেছে। জিএসটি চালুহওয়ার পর থেকে পণ্য ও পরিষেবার ওপর নানা ধরণের ভিন্ন ভিন্ন পরোক্ষ কর সংগ্রহেরব্যবস্থা তুলে নেওয়া হয়েছে। বহু লুকনো কর-এরও একই সঙ্গে বিলোপসাধন করা হয়েছে। তাইএকজন ক্রেতা বর্তমানে জানতে পারেন যে, কতটা কর তিনি রাজ্য সরকারকে এবং কতটাই বাকেন্দ্রীয় সরকারকে দিচ্ছেন। এটিহ’ল এমন এক স্বচ্ছ ব্যবস্থা, যেখানে ক্রেতা সাধারণের স্বার্থে কেউই আঘাত হানতেপারবে না। জিএসটি চালু হওয়ার ফলে প্রতিযোগিতামুখিনতার মাত্রা বৃদ্ধি পাবে এবং তারফলশ্রুতিতে পণ্যের দামও নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকবে। বিশেষত, দরিদ্র এবং মধ্যবিত্তক্রেতা সাধারণ এর প্রত্যক্ষ সুফলগুলি ভোগ করতে পারবেন। বন্ধুগণ, আইনের মাধ্যমে ক্রেতা সাধারণের স্বার্থকে জোরদার করে তোলারপাশাপাশি তাঁদের ক্ষোভ ও অভিযোগগুলির যাতে দ্রুত নিষ্পত্তি ঘটে, তা নিশ্চিত করাওবিশেষ প্রয়োজন। গত তিন বছরে ক্ষোভ ও অভিযোগ নিরসনের জন্য প্রযুক্তির দক্ষব্যবহারের মাধ্যমে এক নতুন এবং যুগোপযোগী ব্যবস্থা গড়ে তুলেছে আমাদের সরকার। ক্রেতা সাধারণের জন্য জাতীয় হেল্পলাইনটির ক্ষমতাও চার গুণ বৃদ্ধি করাহয়েছে। ক্রেতা সুরক্ষার সঙ্গে সম্পর্কিত পোর্টাল এবং সোস্যাল মিডিয়াকেও করে তোলাহয়েছে আরও সুসংবদ্ধ। বেসরকারি বেশ কিছু সংস্থাকে যুক্ত করা হয়েছে এই পোর্টালটিরসঙ্গে। দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য পোর্টালের মাধ্যমে প্রায় ৪০ শতাংশ অভিযোগইসরাসরি পাঠিয়ে দেওয়া হয় সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির কাছে। ‘জাগো গ্রাহক জাগো’ অভিযানেরমাধ্যমে ক্রেতা সাধারণকে আরও সচেতন করে তোলা হচ্ছে। আমি যথেষ্ট আত্মবিশ্বাসেরসঙ্গেই ঘোষণা করতে পারি যে, ভারতে ক্রেতা সুরক্ষার কাজে বর্তমান সরকার যেভাবেসোস্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করছে, এর আগে আর কেউই তা করে দেখাতে পারেনি। বন্ধুগণ, আমার মতে এবং আমার সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি অনুযায়ী ক্রেতা সুরক্ষারপরিধি রয়েছে ব্যাপক ও সুবিস্তৃত। যে কোনও দেশেরই উন্নয়ন এবং সেখানকার ক্রেতাসুরক্ষার বিষয়টি পরস্পরের সম্পূরক। উন্নয়নের সুফলকে প্রত্যেক নাগরিকের কাছে পৌঁছেদেওয়ার ক্ষেত্রে দক্ষ প্রশাসনের এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বঞ্চিতদের কাছে তাদের অধিকার ও পরিষেবা যোগানের কাজ সরকারিভাবে পৌঁছেদেওয়ার মাধ্যমেও ক্রেতা সাধারণের স্বার্থ সুরক্ষিত করে তোলা যায়। বিশুদ্ধজ্বালানির লক্ষ্যে উজ্জ্বলা যোজনা, স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য রক্ষার কাজে স্বচ্ছ ভারতঅভিযান এবং আর্থিক অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে জন ধন যোজনার মধ্য দিয়ে সরকারেরচিন্তাভাবনা ও কাজেরই প্রতিফলন ঘটেছে। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে দেশের প্রত্যেকনাগরিক পরিবারেরই যাতে নিজস্ব একটি বাসস্থান গড়ে ওঠে সেই লক্ষ্য পূরণে কাজ করেচলেছে বর্তমান সরকার। সাম্প্রতিককালে প্রত্যেকটি গৃহস্থ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ পৌঁছে দেওয়ারলক্ষ্যে একটি কর্মসূচির সূচনা করা হয়েছে। ভারতে ক্রেতা ও গ্রাহক সাধারণের অর্থেরও যাতে সাশ্রয় ঘটে, সেইলক্ষ্যেও কর্মসূচি প্রণয়নের কাজে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। এই সমস্ত কর্মসূচি থেকেসবচেয়ে বেশি সুফল ও সুবিধা ভোগ করতে পারবেন দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর সাধারণমানুষ। ভারতে সমীক্ষা চালানোর পর সাম্প্রতিককালে ইউনিসেফ যে প্রতিবেদনটি প্রকাশকরেছে, সে সম্পর্কে আপনারা হয়তো অবগত রয়েছেন। সমীক্ষার প্রতিবেদন অনুযায়ী, চিকিৎসাব্যয়, সময়ের সাশ্রয় এবং মৃত্যুর ঝুঁকি – এই তিনটি বিষয় বিবেচনা করে বলা যায় যেউন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিক কাজকর্ম করার অভ্যাস থেকে মুক্ত থাকার ফলে প্রত্যেকগৃহস্থ পরিবারে বছরে আর্থিক সাশ্রয় ঘটছে ৫০ হাজার টাকার মতো। বন্ধুগণ, দরিদ্র সাধারণ মানুষের কাছে সুলভে ওষুধ পৌঁছে দেওয়ার জন্য সূচনাহয়েছে ভারতীয় জন ঔষধি পরিযোজনার। অত্যাবশ্যকীয় ওষুধপত্রের তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করাহয়েছে ৫০০-রও বেশি ধরণের ওষুধকে। দরিদ্র ওমধ্যবিত্ত শ্রেণীর সাধারণ মানুষদের এর ফলে সাশ্রয় ঘটেছে বেশ কয়েক কোটি টাকা। আমাদের লক্ষ্য ও চিন্তাভাবনা হ’ল শুধুমাত্র ক্রেতা সুরক্ষা নয়, ক্রেতাদেরস্বার্থ রক্ষাও। বন্ধুগণ, মুদ্রাস্ফীতির হার নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে দরিদ্র এবং মধ্যবিত্তক্রেতা সাধারণের অর্থনৈতিক কল্যাণ নিশ্চিত করা সম্ভব হয়েছে। অন্যথায় পূর্ববর্তীসরকারের সময়কালে মুদ্রাস্ফীতির হার যেভাবে বৃদ্ধি পেতে থাকে, তাতে সাধারণ মানুষেরহেঁসেলে ব্যয় বৃদ্ধি ঘটত অস্বাভাবিক হারে। প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহারের মধ্য দিয়ে এবং সরকারি বন্টন ব্যবস্থাকে আরওজোরদার করে তোলার মাধ্যমে সাধারণ দরিদ্র মানুষ যাতে সহজেই সুলভ খাদ্যশস্য সংগ্রহকরতে পারেন, তা নিশ্চিত করা হয়েছে। আজ এই বিশেষ মঞ্চে আমার অন্যান্য দেশের সহকর্মীদের আমি আমাদের ‘গিভ ইট আপ’অভিযানের বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করতে আগ্রহী। আমাদের দেশে ভর্তুকি সহায়তা দেওয়া হয়এলপিজি সিলিন্ডারের ওপর। বন্ধুগণ, দেশের গ্রামাঞ্চলে বসবাসকারী ক্রেতা ও গ্রাহক সাধারণের ডিজিটালক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকারিভাবে রূপায়িত হচ্ছে প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ ডিজিটালসাক্ষরতা অভিযান। ভারতের গ্রামগুলিতে ডিজিটাল পদ্ধতি সম্পর্কে সচেতনতা প্রসারের মধ্য দিয়েভবিষ্যতের জন্য গড়ে তোলা হচ্ছে এক বিরাট বৈদ্যুতিন বিপণন ব্যবস্থা। অভিন্ন লেনদেনপদ্ধতি অর্থাৎ ইউপিআই প্রচুর শক্তি জুগিয়েছে বৈদ্যুতিন বাণিজ্য শিল্পে। ‘ভারতইন্টারফেস ফর মানি’ অর্থাৎ ‘ভীম অ্যাপ’ শহরের পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলেও ডিজিটালপদ্ধতিতে লেনদেনের সুযোগ সম্প্রসারিত করেছে। মেক ইনইন্ডিয়া কর্মসূচির মাধ্যমে আন্তর্জাতিক শিল্প সংস্থাগুলির জন্য আমরা প্রস্তুতকরেছি এক বিশেষ মঞ্চ, যাতে তাঁরা ভারতে এসে নির্মাণ ও উৎপাদনের কাজে যুক্ত হতেপারেন এবং আমাদের দেশের বিশাল মানবসম্পদকে আরও উন্নতভাবে কাজে লাগাতে পারেন। বন্ধুগণ, বিশ্বের এই অঞ্চলটিতে এ ধরণের সম্মেলনের উদ্যোগ ও আয়োজন এই সর্বপ্রথম। বৈদ্যুতিন বাণিজ্য এবং আন্তঃসীমান্ত এলাকায়বাণিজ্যিক প্রচেষ্টার লক্ষ্যে যাতায়াতের ফলে উল্লেখযোগ্য মাত্রায় বৃদ্ধি পেয়েচলেছে সীমান্ত বাণিজ্যও। অন্যান্য দেশের গ্রাহক ও ক্রেতাসাধারণের স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি দেখভালের জন্য সহযোগিতার একটি কাঠামোও গড়েতোলা প্রয়োজন, যাতে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে। এরফলে, পারস্পরিকআস্থা ও বিশ্বাসের বাতাবরণ গড়ে ওঠা ছাড়াও ব্যবসা-বাণিজ্যের প্রসারও অবশ্যম্ভাবী। যোগাযোগের লক্ষ্যে কাঠামোগত ব্যবস্থার প্রসার, শ্রেষ্ঠ পন্থা-পদ্ধতিসম্পর্কে পারস্পরিক অভিজ্ঞতা ও পরামর্শ বিনিময়, ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যেনতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণ এবং যৌথ প্রচেষ্টায় অভিযান গড়ে তোলার মাধ্যমে পারস্পরিকস্বার্থ রক্ষার কাজকে অনুসরণ করা যেতে পারে। বন্ধুগণ, আমাদের আবেগের বন্ধনকে যদি আমরা আরও দৃঢ় করে তুলতে পারি, তা হলেতা আমাদের মিলিত সাংস্কৃতিক ও বাণিজ্যিক ঐতিহ্যকেও আরও নিবিড় করে তুলতে সাহায্যকরবে। নিজেদের সংস্কৃতির জন্য আমরা যেমন গর্বিত, তেমনই অন্যান্যদের সাংস্কৃতিকধারাকে শ্রদ্ধা প্রদর্শন আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যেরই এক বিশেষ অঙ্গ। দেশে এবং দেশের বাইরে যে সমস্ত চ্যালেঞ্জ ও সমস্যা রয়েছে তার মোকাবিলা ও সমাধানে ছাত্রদের উচিত উদ্ভাবনের পথ অবলম্বন করা। প্রসঙ্গত, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং সৌর জ্বালানির কথা উল্লেখ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবার্ষিক সমাবর্তন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ অতিথিরূপে উপস্থিত ছিল সন্নিহিত এলাকার সরকার পরিচালিত বিভিন্ন স্কুলের ছেলে-মেয়েরা। অনুষ্ঠানে পদক বিজয়ীদের তিনি পরামর্শ দেন স্কুলের ঐ ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মত বিনিময়ের জন্য যাতে, তারাও জীবনে সাফল্য অর্জনে উদ্বুদ্ধ ও অনুপ্রাণিত হয়ে ওঠে। আজউত্তরাখণ্ড সফরকালে কেদারনাথ মন্দির পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। এরপর,হরিদ্বার জেলায় পতঞ্জলি রিসার্চ ইনস্টিটিউট-এর উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী।সংক্ষিপ্ত সময়ের মধ্যে তিনি ঘুরে দেখেন ইনস্টিটিউট-এর ড্রাগ ডিসকভারি অ্যান্ডরিসার্চ ল্যাবরেটরিও। সঙ্গে ছিলেন স্বামী রামদেব এবং আচার্য বালকৃষ্ণ। এইউপলক্ষে এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী দেশের গৌরব ঐতিহাসিক পরম্পরাগত ঐতিহ্য, কখনই বিস্মৃতবা অবহেলিত হবে না বলে তাঁর দৃঢ় আত্মবিশ্বাসের কথা ব্যক্ত করেন। তিনি বলেন,পূর্বপুরুষদের উদ্ভাবনী শক্তিকে আমাদের সর্বদাই অটুট রাখতে হবে। শ্রীমোদী বলেন, প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য পরিচর্যার সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ দিকটিই হলস্বচ্ছতা, অর্থাৎ পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বুধবারের (২৬ সেপ্টেম্বর) বৈঠকে অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) সংক্রান্ত নেটওয়ার্কের সরকারি মালিকানা বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। পুনর্গঠিত জিএসটিএন-এ কেন্দ্রীয় সরকারের ৫০ শতাংশ এবং রাজ্য সরকারগুলির ৫০ শতাংশ ইক্যুইটি মালিকানা থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২২ জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখে বারাণসী ও লক্ষ্ণৌ সফর করবেন। পরে, ‘ভারতীয় মাইক্রো ক্রেডিট’ সংস্থা আয়োজিত একটি কর্মসূচিতে যোগ দিয়ে বৈদ্যুতিন রিক্সা বন্টন করবেনপ্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) ছত্তিশগড় সফরে যাচ্ছেন। ভিলাইইস্পাত কারখানার আধুনিকীকরণ ও সম্প্রসারণের পর সেটি তিনি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এই ইস্পাত কারখানার আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়ার মধ্যে রয়েছে – উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি, পণ্যের গুণমান, কম খরচে পণ্য উৎপাদন, বিদ্যুৎ বা শক্তি সাশ্রয় ও পরিবেশগত সুরক্ষার স্বার্থে একাধিক আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার ইত্যাদি। ঐ একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী আইআইটি ভিলাই-এর স্থায়ী ক্যাম্পাসের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এর পাশাপাশি, তিনি ভারতনেট-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের কাজ শুরু উপলক্ষে একটি ফলকের আবরণ উন্মোচন করবেন। ভূগর্ভস্থ অপটিক্যাল ফাইবার নেটওয়ার্কের মাধ্যমে গ্রাম পঞ্চায়েতগুলির মধ্যে সংযোগ গড়ে তুলতে ভারতনেট প্রকল্প চালু হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী ছত্তিশগড় সফরকালে জগদলপুর ও রাইপুরের মধ্যে বিমান পরিষেবার সূচনা করবেন। এছাড়াও তিনি বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের ল্যাপটপ, শংসাপত্র, চেক প্রভৃতি বিতরণ করবেন। এই উপলক্ষে তিনি এক জনসমাবেশেও ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহষ্পতিবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে প্রাক্তন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী ও মহারাষ্ট্রের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী শরদ পাওয়ারের ৭৫-তম জন্মদিন অনুষ্ঠানে যোগ দেন। এই উপলক্ষে, শ্রী পাওয়ারের রাজনৈতিক জীবনকে অত্যন্ত সৃজনশীল বলে প্রধানমন্ত্রী বর্ণনা করেন। ভারতের কৃষি ক্ষেত্রে শ্রী পাওয়ারের আধুনিক ও বৈজ্ঞানিক মনস্কতা এবং কৃষিতে তাঁর বিশেষ অবদানেরও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। হিন্দি দিবস উপলক্ষ্যে সকলকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির এই বিশেষ স্মারকটির নকশা ওনির্মাণ কাজের সঙ্গে যুক্ত ছিল ডিআরডিও। ডঃ এ পি জেআব্দুল কালামের একটি মূর্তির আবরণও উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী, নিবেদন করবেনপুষ্পার্ঘ। পরে, ডঃ কালামের পরিবার-পরিজনদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় মিলিত হবেনতিনি। সেখানেতিনি ‘নীল বিপ্লব’ কর্মসূচির আওতায় লং লাইনার ট্রলারের মঞ্জুরিপত্র তুলে দেবেনসংশ্লিষ্ট গ্রহীতাদের হাতে। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে অযোধ্যা থেকে রামেশ্বরমযাতায়াতকারী একটি নতুন এক্সপ্রেস ট্রেনেরও আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরুর সংকেতদেবেন প্রধানমন্ত্রী। ‘সবুজ রামেশ্বরম’ প্রকল্পের তথ্য সম্বলিত একটি পুস্তিকাওএদিন প্রকাশ করবেন তিনি। স্থাপত্যের দিক থেকে বিভিন্ন জাতীয় স্মৃতিসৌধ থেকেঅনুপ্রেরণা লাভ করা হয়েছে স্মারকটির নকশা ও আঙ্গিক নির্মাণে। চ্যান্সেলর মার্কেল, জার্মানির প্রতিনিধিদল, আমার সহকর্মীবৃন্দ, চ্যান্সেলর অ্যাঞ্জেলা মার্কেল এবং তাঁর বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দকে ভারতে স্বাগত জানাতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। জার্মানির ২৫তম পুনর্মিলন বার্ষিকীতে ভারতের জনসাধারণের পক্ষ থেকে আমি ঐ দেশকে আন্তরিকভাবে অভিনন্দন জানাচ্ছি। এই গুরুত্বপূর্ণ এক সন্ধিক্ষণে দেশে এবং বিদেশে আপনাদের সাফল্যের দৃষ্টান্তগুলির দিকে সগর্বেই আপনারা একবার ফিরে তাকাতে পারেন। চ্যান্সেলর মার্কেল, ইউরোপ তথা সমগ্র বিশ্বের কঠিন মুহূর্তে আপনার নেতৃত্ব আশ্বাস ও আত্মবিশ্বাসের বার্তা বহন করে নিয়ে আসে। নিজের দেশে নানা কর্মব্যস্ততা থাকা সত্ত্বেও আপনি ভারতে আসার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। ভারতের সঙ্গে সম্পর্ককে আপনি কতটা গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনা করেন এবং সরকারি পর্যায়ে পারস্পরিক মতবিনিময়কে আপনি কতটা অর্থবহ বলে মনে করেন, আপনার প্রতিনিধিদলের কথাবার্তার মধ্যেই তার প্রতিফলন ঘটেছে। আপনার অঙ্গীকার ও প্রতিশ্রুতি আমাদের সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার পথে সবিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তাই, আপনাকে অসংখ্য ধন্যবাদ জানাই। আন্তঃসরকারি পর্যায়ে আলাপ-আলোচনা তথা মতবিনিময় সত্যিই অভিনবত্বের দাবি রাখে। শুধু তাই নয়, তা আমাদের সম্পর্ককে সবদিক দিয়েই এগিয়ে নিয়ে যেতে চায়। এর বাইরেও যা আমাদের উপরি পাওনা তা হল – গত এক বছরে আমরা দু’পক্ষই আমাদের সম্পর্ককে গভীরতর করে তুলেছি। ভারতের অর্থনৈতিক পটপরিবর্তনের যে দর্শন তার বাস্তবায়নে আমরা জার্মানিকে এক স্বাভাবিক অংশীদার বলেই মনে করি। জার্মানির শক্তি এবং ভারতের অগ্রাধিকার ভাবনার মধ্যে কোনও বিরোধ নেই। আমাদের পরস্পরের প্রতি শুভেচ্ছাও তারই সূচক। আমাদের লক্ষ্য অর্থনৈতিক মৈত্রী-বন্ধনের সম্পর্ক গড়ে তোলা। পারস্পরিক বন্ধনের এক সমৃদ্ধ ইতিহাসের আমরা সাক্ষী। আজ আমরা প্রায় তিন ঘন্টা ধরে পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময় করেছি। আমাদের আলাপ-আলোচনা আমরা এখানে এবং আগামীকাল বেঙ্গালুরুতেও চালিয়ে যাবো। এই আলাপ-আলোচনা এবং তার ফলাফলে আমি খুবই সন্তুষ্ট। আমাদের উন্নয়নমূলক কর্মসূচিতে জার্মানি যেভাবে সাড়া দিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে উৎসাহব্যঞ্জক। নির্মাণ শিল্প, পরিকাঠামো ও দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে অধিকতর বিনিয়োগ এবং বাণিজ্য ও প্রযুক্তি সহযোগিতার প্রসার সম্পর্কে আমরা খুবই আশাবাদী। প্রযুক্তি ক্ষেত্রে জার্মানির দক্ষতা এবং তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতের পারদর্শিতা আগামী প্রজন্মের শিল্প সম্ভাবনার উপযোগী আরও দক্ষ, ব্যয়সাশ্রয়ী এবং পরিবেশ-বান্ধব বাতাবরণ গড়ে তুলতে পারে। ‘স্মার্ট সিটি’, ‘গঙ্গা শোধন’ এবং ‘বর্জ্য ব্যবস্থাপনা’ ক্ষেত্রে জার্মানির সাহায্য ও সহযোগিতা এক বাস্তব সত্য হয়ে উঠেছে। প্রযুক্তি থেকে শুরু করে কলা – সমস্ত ধরণের পঠন-পাঠনের ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতা আজ আর নিছক ধারণার মধ্যে আবদ্ধ নেই। বিশুদ্ধ জ্বালানি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার ক্ষেত্রে অঙ্গীকারের জন্য জার্মানির নেতৃত্বকে আমি বিশেষভাবে প্রশংসা করি। বিশুদ্ধ ও পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি তথা জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে গবেষণার ক্ষেত্রেও পারস্পরিক সহযোগিতাকে আরও গভীরতর করে তুলতে আমরা আগ্রহী। প্রতিরক্ষার জন্য সাজসরঞ্জাম নির্মাণ, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবসা-বাণিজ্য, গোয়েন্দা তথ্য বিনিময় এবং আতঙ্ক ও সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলার ক্ষেত্রেও আমাদের অংশীদারিত্ব উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পাবে। আমাদের সম্পর্কের প্রসারে এগুলি হল নিরাপত্তার দিক থেকে খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আন্তর্জাতিক রপ্তানি বাণিজ্য নিয়ন্ত্রক সংস্থায় ভারতের সদস্যপদকে জোরালো ভাষায় সমর্থনের জন্য আমি জার্মানিকে স্বাগত জানাই। নিউইয়র্কে জি-৪ শীর্ষ বৈঠকে আলোচনার সূত্রে রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিশেষত, নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের প্রশ্নে চ্যান্সেলর এবং আমি দু’জনেই অঙ্গীকারবদ্ধ। আফগানিস্তানের শান্তি, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের লক্ষ্যে জার্মানির মূল্যবান সহযোগিতার জন্য আমি চ্যান্সেলর’কে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। পরিশেষে, দশম শতাব্দীতে জম্মু ও কাশ্মীরের দুর্গা প্রতিমার মহিষাসুরমর্দিনী অবতারের যে প্রতিমূর্তি আমরা তাঁর কাছ থেকে ফেরৎ পেয়েছি সেজন্য চ্যান্সেলর মার্কেল’কে আমি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। তিনি হলেন, অশুভের বিরুদ্ধে শুভর জয়লাভের এক বিশেষ প্রতীক। আমাদের আলোচনার ফলশ্রুতিতে যে বিষয়টি সুপরিস্ফূট হয়ে উঠেছে, তা হল ভারত-জার্মানি অংশীদারিত্ব সমগ্র বিশ্বের মঙ্গলের লক্ষ্যে এক শুভ পদক্ষেপ। একটি চারাকে জলসিঞ্চনের মাধ্যমে বড় করে তুলতে হয় – এই কথাটি আমাদের দু’দেশের সংস্কৃতি ও মৈত্রী সম্পর্কের ক্ষেত্রেও সমানভাবে প্রযোজ্য। আজ আমাদের এই বৈঠক ছিল একদিক থেকে অনন্য এবং আমি আশাবাদী যে আমাদের মৈত্রী সম্পর্কের বৃক্ষটিও অচিরে ফলদায়ী হয়ে উঠবে। বিশিষ্ট অতিথিবর্গ এবং ভদ্র মহোদয় ও ভদ্রমহিলাদের নমস্কার জানাই। ঈশ্বরের নিজভূমি কেরলে বিশ্ব আয়ুর্বেদ উৎসবের অঙ্গ হিসেবে আয়োজিত ‘ভিশন কনক্লেভ’-এর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি খুশি। আয়ুর্বেদের বিভিন্ন দিক আলোচনা ও বিশ্লেষণ এবং বহু মানুষের অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে পাঁচ দিনের এই বিশ্ব আয়ুর্বেদ উৎসব যে বিশেষ চিত্তাকর্ষক হয়ে উঠবে তা আমি জানি। আনন্দের কথা, এই আয়ুর্বেদ উৎসবে বিরাট সংখ্যায় যোগ দিতে এসেছেন বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বিদেশী প্রতিনিধিরা। উৎসবে তাঁদের অংশগ্রহণ আয়ুর্বেদের প্রসারে যে বিশেষ উৎসাহ সঞ্চার করবে, সে সম্পর্কে আমি নিশ্চিত। আয়ুর্বেদের সাধারণ সংজ্ঞা হল, “জীবন কেন্দ্রিক বিজ্ঞান”। কারণ, আয়ূর-এর অর্থ হল, জীবন এবং বেদ কথাটির অর্থ হল বিজ্ঞান। এর অর্থ হল, যখন তিনটি দোষ ও অগ্নির মধ্যে ভারসাম্য বজায় থাকে এবং শরীর থেকে দূষিত পদার্থ নিঃসারিত হয় সঠিক শৃঙ্খলার মধ্য দিয়ে, তখনই স্বাস্থ্য হয়ে ওঠে সুষম। আয়ুর্বেদের ‘দিনচর্যা’ অর্থাৎ, দৈনন্দিন শৃঙ্খলা ব্যক্তির জীবনে শান্তি ও সম্প্রীতি নিশ্চিত করে। আয়ুর্বেদের দৈনন্দিন জীবন শৃঙ্খলা মানুষের শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্যের পূর্ণ বিকাশ ঘটায়। প্রশ্ন হল, বর্তমান বিশ্ব, স্বাস্থ্য সম্পর্কিত কোন্‌ কোন্‌ চ্যালেঞ্জের আজ সম্মুখীন? অসংক্রামক এবং উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস এবং ক্যান্সারের মতো জীবনশৈলী নির্ভর রোগব্যাধিগুলি আজ সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দেখা দিয়েছে। এই সমস্যার সমাধানে পথ বাতলে দিতে পারে একমাত্র আয়ুর্বেদই। পরিবেশ-বান্ধব আচার-আচরণ এবং ভেষজ গুণসম্পন্ন লতাগুল্মের মধ্যে সমন্বয় ঘটিয়ে ভারসাম্য ও স্বাস্থ্য রক্ষার ব্যবস্থা করে এই চিকিৎসা পদ্ধতি। দুর্ভাগ্যবশত, নানা কারণে আয়ুর্বেদের প্রকৃত সম্ভাবনা পুরোপুরিভাবে আহরণ করা সম্ভব হয়ে ওঠে নি। বৈজ্ঞানিক পরীক্ষা-নিরীক্ষার অভাব এবং গুণগত মান ও কার্যকারিতা সম্পর্কে দ্বিধা ও সংশয় এর অন্যতম মূল কারণ। যদি এই বিষয়গুলির দিকে যথাযথ নজর দেওয়া যায়, তা হলে আয়ুর্বেদ যে বহু স্বাস্থ্য সমস্যারই সমাধান করতে পারে, সে ব্যাপারে আমি নিশ্চিত। বিশ্বে সুলভে সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রসারের ক্ষেত্রে ভারত এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারে। এই বিষয়গুলি সম্পর্কে আমরা কি করতে পারি এবং বর্তমানে কি-ই বা করে চলেছি, সেই দিকটা এবার একবার ভেবে দেখা যাক। আয়ুর্বেদ এবং প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির প্রসারে আমাদের সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার পরই আয়ুষ দপ্তরটিকে ভারত সরকারের একটি পূর্ণাঙ্গ মন্ত্রকে উন্নীত করা হয়। ব্যয়সাশ্রয়ী আয়ুষ সেবা প্রসার, এ সম্পর্কিত শিক্ষা ব্যবস্থা জোরদার করে তোলা, আয়ুর্বেদ, সিদ্ধা, ইউনানি এবং হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা সংক্রান্ত ওষুধপত্রের গুণগতমান নিশ্চিত করা এবং কাঁচামালের নিরন্তর যোগানের মাধ্যমে আয়ুষ চিকিৎসা ব্যবস্থার প্রসারে চালু হয়েছে জাতীয় আয়ুষ মিশন। আয়ুষ পদ্ধতির ওষুধপত্রের গুণমান নিয়ন্ত্রণে আইনি সংশোধনের লক্ষ্যেও পদক্ষেপ গৃহীত হয়েছে, যাতে কেন্দ্র ও রাজ্য পর্যায়ে তা বলবৎ করা যায়। যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজে হাত দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে – ওষুধের মান নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত কেন্দ্রীয় সংস্থাটির মধ্যে আয়ুষ সংক্রান্ত একটি পৃথক কাঠামো গড়ে তোলা, বিভ্রান্তিকর বিজ্ঞাপন নিয়ন্ত্রণ এবং জাতীয় আয়ুষ মিশনের আওতায় বিভিন্ন রাজ্যকে আর্থিক সহায়তার যোগান। যোগ বিশেষজ্ঞদের জ্ঞান ও দক্ষতা সম্পর্কে বিশ্বাসযোগ্যতা নিশ্চিত করতে গত বছর ২২ জুন সামগ্রিক স্বাস্থ্যের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক সম্মেলন চলাকালীন চালু হয়েছে যোগ ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত পেশাদারদের স্বেচ্ছায় শংসাপত্রদান সম্পর্কিত এক কর্মসূচি। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার চিকিৎসা কৌশল পদ্ধতির সঙ্গে চিরাচরিত ও পরিপূরক স্বাস্থ্য পদ্ধতির মিলন ঘটানো হয়েছে, যাতে মানুষের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্য পরিচর্যার দিকে তা লক্ষ্য রাখতে পারে। আধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে রোগনির্ণয়ের শক্তিশালী ও দক্ষ ব্যবস্থা রয়েছে, যা মানুষের শরীরের রোগব্যাধিকে সহজে চিহ্নিত করে ফেলতে পারে। স্বাস্থ্য পরিচর্যায় প্রযুক্তির প্রয়োগ ঘটিয়ে রোগের গতিপ্রকৃতি নির্ণয় এবং সেইমতো ব্যবস্থা গ্রহণের বিষয়টি নিশ্চিত করা সম্ভব। তবে, এর বাইরেও আরও অনেক কিছুই আমাদের করার রয়েছে। চিকিৎসার উত্তরোত্তর ব্যয় এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া চিকিৎসা বিশেষজ্ঞদের বাধ্য করেছে প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবস্থার দিকে আরও বেশি করে নজর দিতে। জনসাধারণের কাছে প্রতিরোধমূলক, বিকাশশীল এক সামগ্রিক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সুযোগ পৌঁছে দিতে আয়ুর্বেদ সহ অন্যান্য আয়ুষ পদ্ধতির সম্ভাবনা আহরণে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। আয়ুর্বেদ, যোগ এবং অন্যান্য প্রথাগত চিকিৎসার সর্বাধিক প্রয়োগ সম্ভব করে তুলতেও আমরা নিজেদের নিয়োজিত করেছি। যে সমস্ত তরুণ শিল্পোদ্যোগী ‘স্টার্ট আপ’ শুরুর পরিকল্পনা করেছেন, তাঁরা সামগ্রিক স্বাস্থ্য পরিচর্যার ক্ষেত্রে যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধা রয়েছে তার কথা একবার ভেবে দেখতে পারেন। চিরাচরিত চিকিৎসা পদ্ধতি গ্রামীণ মানুষের অনেকেরই নাগালের মধ্যে। নিরাপত্তা ও কার্যকারিতার দিক থেকে সফল প্রমাণিত এই সমস্ত চিকিৎসা স্থানীয়ভাবেই মানুষের আওতাধীন। শুধু তাই নয়, জনজাতির সঙ্গে সাংস্কৃতিক এক পরিবেশ-বান্ধব পদ্ধতি রূপে গড়ে উঠেছে এই চিকিৎসা ব্যবস্থাগুলি। উন্নয়নশীল দেশগুলির অনেকগুলিতেই প্রথাগত চিকিৎসা ব্যবস্থা সেখানকার দরিদ্র জনসাধারণের আর্থিক ও ব্যবহারিক আয়ত্তের মধ্যে থাকা একমাত্র সম্পদ। এই কারণেই এই সমস্ত চিকিৎসা পদ্ধতির গুণগতমান নিশ্চিত করার বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। আয়ুর্বেদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট যাঁরা আজ এখানে সমবেত হয়েছেন, তাঁরা সকলেই অবশ্যই স্বীকার করবেন যে, আয়ুর্বেদ চিকিৎসা সম্পর্কে আমাদের প্রথাগত জ্ঞানকে এমনভাবে ব্যবহার করতে হবে যাতে তা নিরাপত্তা, কার্যকারিতা, সুনির্দিষ্ট গুণমান এবং বাস্তব পরিস্থিতিমুখী হয়ে ওঠে। একইসঙ্গে জৈব চিকিৎসা পদ্ধতি, স্বাস্থ্য প্রযুক্তি ও তথ্য প্রযুক্তির সঙ্গে তাল মিলিয়ে আমাদের এগিয়ে যেতে হবে এই কাজে। দিল্লি ঘোষণার বিষয়গুলির সঠিক রূপায়ণের মধ্য দিয়ে আয়ুর্বেদ সহ প্রথাগত চিকিৎসা পদ্ধতির যথাযথ উন্নয়ন জাতীয়, আঞ্চলিক তথা বিশ্ব পর্যায়ে যে সম্ভব হয়ে উঠবে সে ব্যাপারে আমি আশাবাদী। আয়ুর্বেদ এবং অন্যান্য আয়ুষ চিকিৎসা ব্যবস্থার ক্ষেত্রে আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলিকে প্রশিক্ষণ, দক্ষতা বৃদ্ধি এবং তথ্য ও প্রযুক্তিগত বিনিময় কর্মসূচির বিশেষ কেন্দ্র রূপে ব্যবহারের প্রস্তাব রইল আমাদের পক্ষ থেকে। এই সমস্ত ক্ষেত্রে গুণগত স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও শিক্ষার প্রসার ঘটাতে দক্ষ পেশাদার গড়ে তোলার লক্ষ্যে নজর দিতে হবে দেশের নেতাদের। ভদ্র মহোদয় ও ভদ্র মহিলাগণ, আপনারা সকলেই জানেন যে, যোগ ও আয়ুর্বেদের এক সমৃদ্ধ ঐতিহ্য রয়েছে ভারতের। আয়ুর্বেদ সম্পর্কিত জ্ঞানের বহু বিচিত্র সাংস্কৃতিক মূল বা শিকড়ের কথা বিধৃত রয়েছে আমাদের প্রাচীন পুঁথিপত্রে। চরক সংহিতা এবং সুশ্রূত সংহিতায় চিকিৎসকদের পরামর্শ দেওয়া হয়েছে ভেষজ গুণসম্পন্ন লতাগুল্ম সংগ্রহে গোপালক, ব্যাধ এবং বনবাসীদের সাহায্য গ্রহণ করার জন্য। চরক সংহিতায় আমরা লক্ষ্য করেছি, মধ্যপ্রাচ্যের চিকিৎসকদের সমবেতভাবে মিলিত হয়ে আয়ুর্বেদের মূল নীতিগুলি রচনা করতে। তিনটি প্রাচীন পুঁথিতে বৌদ্ধদের নীতিগত মূল্যবোধকে গুরুত্বের সঙ্গে তুলে ধরা হয়েছে। অষ্টাঙ্গহৃদয়ম – এই প্রাচীন পুঁথি শাস্ত্রটির রচয়িতা ভাগবত ছিলেন স্বয়ং একজন বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। এই প্রচেষ্টা আমরা অব্যহত রাখবো। এই লক্ষ্যটিকেই আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চায় বিশ্ব আয়ুর্বেদ উৎসব। ভিশন কনক্লেভ তথা বিশ্ব আয়ুর্বেদ উৎসবের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য আমি কামনা করি। আয়ুর্বেদকে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দিতে সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলির ওপর যে আলোকপাত করা হবে এই উৎসবে সে ব্যাপারে পূর্ণ আস্থা র‍য়েছে আমার। বিখ্যাত আয়ুর্বেদ গ্রন্থ অষ্টাঙ্গহৃদয়মের কিছু উদ্ধৃতি স্মরণ করে আমি আমার বক্তব্য শেষ করবো। দরিদ্র, রোগব্যাধি জর্জরিত এবং শোকসন্তপ্ত মানুষদের সাহায্য করা উচিৎ। সাহসিকতা এবং মানবতাবাদী কাজকর্মের মধ্য দিয়ে এই বাহিনী এক স্বতন্ত্রভূমিকা পালন করে চলেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে ভারত’কে বর্তমানে এক উজ্জ্বল স্থান হিসাবে চিহ্নিত করাহচ্ছে। বিশ্বের মধ্যে সবচেয়ে আকর্ষণীয় বিনিয়োগের লক্ষ ্য হিসাবে ভারত উঠে এসেছে। এটা সম্ভবহয়েছে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুষম নীতিগত উদ্যোগের মাধ্যমে। সহজে ব্যবসাকরার সুবিধা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ৭ হাজারেরও বেশি সংস্কারমূলক উদ্যোগ রূপায়ণ করাহয়েছে। অনেক ধরনের পদ্ধতি সরলীকরণ এবং স্বচ্ছ করে তোলা হয়েছে। সরকার ১,২০০-রও বেশিপুরনো আইনকে বাতিল করেছে। এগুলি হচ্ছে কয়েকটি উদাহরণ মাত্র। এই সব উদ্যোগেরফলে ভারত গত দু’বছরে বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের গ্লোবাল কম্পিটিটিভ ইনডেক্সে ৩২ ধাপউঠেছে। যে কোনও দেশের নিরিখে এটি সর্বোচ্চ উত্তোরণ। ২০১৬ সালের বিশ্ব ব্যাঙ্কেরপরিবহণ সংক্রান্ত লজিস্টিক্‌স পারফরমেন্স ইনডেক্সেও ভারত ১৯ ধাপ ওপরে উঠেছে। বস্ত্রবয়ন এবং পোশাক শিল্পে বৈদেশিক বিনিয়োগের জন্য আমাদের বিনিয়োগসংক্রান্ত নীতি সবচেয়ে উদার। আমরা বস্ত্রবয়ন ও পোশাক শিল্পে স্বয়ংক্রিয়ভাবে ১০০শতাংশ প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের অনুমতি দিয়েছি। ভারতীয় অর্থনীতিতে বস্ত্রবয়ন শিল্পে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান রয়েছে। সমগ্রমূল্য শৃঙ্খলে একটি অত্যন্ত শক্তিশালী এবং প্রতিযোগিতামূলক। ভারতে এই শিল্পের জন্যতুলো, উল, রেশম, পাট এবং মনুষ্য নির্মিত তন্তুর মতো পর্যাপ্ত কাঁচামাল পাওয়া যায়।প্রকৃতপক্ষে ভারত হচ্ছে বিশ্বের বৃহত্তম তুলো এবং পাট উৎপাদক দেশ। এছাড়া, রেশম এবংমনুষ্য নির্মিত তন্তু উৎপাদনের ক্ষেত্রেও ভারতের স্থান দ্বিতীয় বৃহত্তম। অন্যান্যদেশের তুলনায় এইসব সুবিধাগুলির ফলে আমাদের দেশ অনেকটা এগিয়ে রয়েছে। এর অতিরিক্তহিসাবে ভারতে অত্যন্ত শক্তিশালী স্পিনিং, উইভিং, নিটিং মতো বুনন সংক্রান্ত দক্ষতাএবং পোশাক উৎপাদনেরও দক্ষতা রয়েছে। ন্যায্য মজুরিতে দক্ষ যুবক শ্রমিক পাওয়া যায়। ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তের সংখ্যা এইবৃদ্ধির চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে। আমাদের দেশে বস্ত্রবয়ন এবং উৎপাদিত পোশাকেরবিশ্বব্যাপী উচ্চ চাহিদা রয়েছে। আমাদের দেশে দক্ষ শ্রমশক্তি অভাবের সমস্যা মোকাবিলায় শিল্পমুখী প্রশিক্ষণকর্মসূচির মাধ্যমে একটি অখন্ড দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি রূপায়ণ করা হচ্ছে। উৎপাদন এবং রপ্তানির ক্ষেত্রে আমাদের শক্তির পিছনে রয়েছে বিশ্বমানেরপ্রশিক্ষণ এবং গবেষণা সংস্থা তৈরি করার মধ্যে। ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ফ্যাশনটেকনোলজি সারা দেশে ১৬টি পেশাদার পরিচালিত ক্যাম্পাসের নেটওয়ার্ক রয়েছে। ফ্যাশনসংক্রান্ত শিক্ষা, গবেষণা, উন্নয়ন, প্রশিক্ষণ এবং কনসালটেন্সির ক্ষেত্রে এইসংস্থাগুলি গুণমান উন্নয়নের ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়ে থাকে। বিগত কয়েক বছরে আমাদের দেশে রাজ্যগুলির মধ্যে বিনিয়োগ ও শিল্প আকর্ষণের একস্বাস্থ্যকর প্রতিযোগিতা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। এর ফলে, রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে বেশ কিছুগুরুত্বপূর্ণ সংস্কার কার্যকর করা হয়েছে। প্রত্যেকটি রাজ্যে বস্ত্রবয়ন সহ নতুননতুন শিল্প স্থাপনের সুযোগ-সুবিধা দিতে নিজস্ব উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে। আমার মনে হয়,আরও বেশি করে বস্ত্রবয়নজাত দ্রব্য রপ্তানির ওপর গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে। ভারত হচ্ছে এমন এক দেশ যেখানে সংস্কৃতি, ঐতিহ্য এবং ফ্যাশনের ক্ষেত্রেবৈচিত্র্য রয়েছে। বিভিন্ন অঞ্চলের মানুষের পরিহিত পোশাক-পরিচ্ছদের মধ্যে এইবৈচিত্র্যটি সুস্পষ্টভাবে ফুটে ওঠে। প্রত্যেক রাজ্যের নিজস্ব সুপরিচিত পোশাক-পরিচ্ছদের জন্য দায়িত্বপ্রাপ্তআধিকারিক নিয়োগ করে সমগ্র মূল্য শৃঙ্খলে উৎপাদন এবং ব্যবসায়ীদের মধ্যেসমন্বয়সাধনের ব্যবস্থা করতে হবে। এই ধরনের পোশাক-পরিচ্ছদ উৎপাদন থেকে রপ্তানি সর্বক্ষেত্রেই এই উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। সরকারি সংস্থা ও শিল্প সংস্থাগুলিকেও সহযোগিতার বাতাবরণে বিষয়টি নিয়েকাজে নামতে হবে। এরফলে, বিশ্ব বাজারের চাহিদা মেটাতে এবং আমাদের রপ্তানি বাড়াতেআমাদের শক্তিকে সংহত করা সম্ভব হবে। বৃদ্ধি এবং সম্পদসৃজনের নতুন মন্ত্র হচ্ছে উদ্ভাবন ও গবেষণা। বস্ত্রবয়নশিল্পকেও বৃদ্ধির জন্য ক্রমাগত উদ্ভাবন এবং গবেষণা চালিয়ে যেতে হবে, যাতে নতুননতুন বাজার খুঁজে পাওয়া যায়। উদাহরণ হিসাবে বলা যায় যে, বিশ্বের কোনও কোনও অংশেবৃহদাকারের মানুষজন দেখা যায়। তাই এঁদের উপযুক্ত পোশাক-পরিচ্ছদ হবে আমাদের দেশেরতুলনায় দৈর্ঘ্যে-প্রস্থে অনেকটা বড় মাপের। এজন্য আমাদের তাঁতের প্রস্থ বৃদ্ধি করাপ্রয়োজন হতে পারে। অন্যত্র চাহিদা পৃথক হতে পারে। রপ্তানি বাজারে প্রধান স্থানটিদখল করার জন্য এইসব বিষয়ে বিস্তারিতভাবে ঞ্জর দেওয়া প্রয়োজন। আজকের দিনে যেসব পণ্যদ্রব্য উৎপাদনে কার্বন নির্গমনের পরিমাণ শূন্য, সেইধরনের পণ্যদ্রব্যের চাহিদা বৃদ্ধি পেয়েছে। সহজ-সরল ও পরিবেশ-বান্ধব জীবনশৈলীর কথাএখন সবাই বলেন। জৈবরং, জামা-কাপড় এবং জৈব পদ্ধতি ব্যবহার করে উৎপাদিততন্তুজদ্রব্যের বাজার দিন দিন বাড়ছে। আমাদের এই ধরনের জৈব পণ্যদ্রব্য উদ্ভাবনেরক্ষেত্রে উদ্যোগ নিতে হবে। তুলো এবং পাট ছাড়াও আমাদের কলা এবং বাঁশজাত তন্তুর মতো জিনিসপত্র রয়েছে। এইধরনের জিনিসপত্র থেকে উৎপাদিত পণ্যদ্রব্যের সুনির্দিষ্ট বাজার রয়েছে। তাই, আমাদেরন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ ফ্যাশন টেকনোলজি এবং বৈজ্ঞানিক ও শিল্প সংস্থাগুলিঅন্যান্য উৎস থেকে তন্তু উদ্ভাবনের লক্ষ্যে আরও গবেষণার প্রয়োজন রয়েছেন। আমাদের দেশের অখন্ড বস্ত্রবয়ন ক্লাস্টারগুলি পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যসংক্রান্ত নিরাপত্তার ক্ষেত্রে বিশ্বমান মেনে চলে। আমি শুনেছি, আগামী দু’দিন ধরে বিভিন্ন রাজ্য সরকারের সঙ্গে আপনাদেরআলাপ-আলোচনার সুযোগ হবে। আমার মন্ত্রিসভার কয়েকজন সদস্যও আপনাদের সঙ্গে কথাবার্তাবলবেন। আমি নিশ্চিত যে, এইসব আলাপ-আলোচনা আপনাদের জন্য আকর্ষণীয় ও অর্থবহ হয়েউঠবে। আমি আশা করি, এই অনুষ্ঠান বস্ত্রবয়ন শিল্প ক্ষেত্রে ভারতের অনুকূল নীতি,পরিবেশ এবং শক্তি ও বিরাট সুযোগ বিষয়ে ভারত ও বিশ্ব নেতৃবৃন্দের মধ্যে পরিচিতি গড়েতোলার পক্ষে সহায়ক ভূমিকা নেবে। এরফলে, যেসব দেশ ভারতে বিনিয়োগের সুযোগ খুঁজছে,তাদের কাছে ভারত এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হিসাবে প্রতিষ্ঠিত হয়ে ওঠার পক্ষে সহায়কহবে। আমি আশা করি, বিশ্বের মধ্যে পোশাক-পরিচ্ছদ ও বস্ত্রবয়নের ক্ষেত্রে ভারতসবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ লগ্নি এবং কাজের স্থান হিসাবে দেশের বিরাট সম্ভাবনাকে সফল করেতুলতে এই অনুষ্ঠান বিশেষ ভূমিকা নেবে। গান্ধীনগরে আপনাদের আগামী তিনদিনের আলাপ-আলোচনা সফল এবং উৎপাদনমুখী হয়েউঠুক, আমি কামনা করছি। আমি আপনাদের কাছে ভারতে আসতে, বিনিয়োগ করতে এবং এদেশে বস্ত্রবয়ন শিল্পেউৎপাদন শুরু করতে আহ্বান জানাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে ভারতই হল একমাত্র অর্থনীতি, যা আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের অর্থনৈতিক সংকট সত্ত্বেও দৃঢ়তার সঙ্গে উন্নয়নের পথে এগিয়ে চলেছে। সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়বাদের গুরুত্বের কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মনেপ্রাণে তার রূপায়ণে আমাদের সামিল হতে হবে। ‘টিম ইন্ডিয়া’ হিসেবে একযোগে কাজ করে যেতে হবে কেন্দ্র ও রাজ্যগুলিকে। এই প্রকল্পে ৬১.৬৭৯ কিলোমিটার দীর্ঘ তিনটি করিডর গড়ে তোলা হবে। এই করিডরের ৪২.৩৫৯ কিলোমিটার অংশ হবে ভূগর্ভস্থ এবং অবশিষ্ট ৩৯.৩২০ কিলোমিটার অংশ ভূ-পৃষ্ঠে নির্মাণ করা হবে। প্রকল্প রূপায়ণে মোট খরচ ধরা হয়েছে ২৪ হাজার ৯৪৮ কোটি ৬৫ লক্ষ টাকা। দিল্লি মেট্রো রেল নিগম লিমিটেড এই প্রকল্প রূপায়ণ করবে। এর ফলে, জাতীয় রাজধানী অঞ্চলের অনেক এলাকা মেট্রো পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত হবে। করিডরগুলির নির্মাণের কাজ শেষ হলে মেট্রোর যাত্রীরা প্রয়োজন মতো যাত্রা বিরতি ঘটিয়ে অন্য রুটে সফর করতে পারবেন। এছাড়াও, এই করিডরগুলি চালু হলে সড়ক যানজট কমবে এবং যানবাহণ দূষণ নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। প্রস্তাবিত তুঘলকাবাদ – অ্যারোসিটি করিডরটি বিমানবন্দরের সঙ্গে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটাবে। একজন শিক্ষক প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চান যে, ছেলেমেয়েদের পরীক্ষার ব্যাপারে মানসিক চাপে থাকা অভিভাবকদের শিক্ষক-শিক্ষিকারা কি পরামর্শ দেবেন? শ্রী মোদী বলেন, প্রত্যেক দিন তিনি এক নতুন প্রাণশক্তি নিয়ে কাজ করেন। একদল ছাত্রছাত্রী প্রধানমন্ত্রীকে জিজ্ঞেস করেন, কিভাবে পড়াশুনাকে আরও আনন্দদায়ক করা যায় এবং কিভাবে পরীক্ষা ব্যবস্থা একজনের ব্যক্তিত্বের বিকাশ ঘটাতে পারে? গত বছরের ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ অনুষ্ঠানে মতবিনিময় পর্বের কথা উল্লেখ করে এক ছাত্রী জানান, এখন বাবা-মা তাঁর পরীক্ষা হোক বা কর্মজীবন সমস্ত বিষয়েই অনেক স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন।শ্রী মোদী বলেন, অভিভাবকদের ইতিবাচক মনোভাব তাঁর ছেলেমেয়ের জীবনে ব্যাপক অবদান রাখতে পারে। একজন ব্যক্তি যখন তাঁর অতীত রেকর্ডের সঙ্গে প্রতিযোগিতা করেন, তখন তাঁর হাতাশা ও নেতিবাচক মনোভাব সহজেই পর্যবসিত হয়। শিক্ষা ব্যবস্থায় আরও উন্নতির প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে ছাত্রছাত্রীরা বলেন, শিক্ষা ব্যবস্থা কেবল মুখস্ত বিদ্যার প্রবণতাই দূর করে না, একই সঙ্গে পড়ুয়ারা কি শিখেছে, তাও প্রমাণ করে। আর্জেন্টিনার পক্ষে বিনিময়কারী ভারতের পক্ষে বিনিময়কারী প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে সহযোগিতা নিয়ে ভারতের প্রতিরক্ষা মন্ত্রক এবং আর্জেন্টিনার প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের মধ্যে সমঝোতাপত্র। পররাষ্ট্র মন্ত্রী মিঃ জর্জ ফরি তথ্য ও সম্প্রচার তথা ক্রীড়া প্রতিমন্ত্রী কর্ণেল রাজ্যবর্ধন সিং রাঠোর পর্যটন ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে ভারত ও আর্জেন্টিনার মধ্যে সমঝোতাপত্র। ভারতের প্রসার ভারতী এবং আর্জেন্টিনার ফেডারেল সিস্টেম অফ মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক কন্টেন্টস্‌ – এর মধ্যে সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র। ভারতের ড্রাগস্‌ স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন এবং আর্জেন্টিনার ন্যাশনাল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন অফ ড্রাগস্‌ ফুড অ্যান্ড মেডিকেল টেকনোলজির মধ্যে সমঝোতাপত্র। দক্ষিণ মেরুতে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে ভারতের ভূ-বিজ্ঞান মন্ত্রক এবং আর্জেন্টিনার পররাষ্ট্র তথা উপাসনা বিষয়ক মন্ত্রকের মধ্যে সমঝোতাপত্র। ২০১০ সালে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্র অনুযায়ী ভারতের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রক এবং আর্জেন্টিনার উৎপাদন ও শ্রম মন্ত্রকের মধ্যে পারস্পরিক সহযোগিতার লক্ষ্যে কর্মপরিকল্পনা তৈরি করা। কৃষি শিল্প সচিব মিঃ লুইস মিগুয়েল এটচেভিয়ার কৃষি সচিব শ্রী সঞ্জয় আগরওয়াল ২০০৬ সালে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্র অনুযায়ী ভারতের কৃষি গবেষণা পর্ষদ এবং আর্জেন্টিনার উৎপাদন ও শ্রম মন্ত্রকের কৃষি শিল্প বিষয়ক দপ্তরের মধ্যে সহযোগিতার লক্ষ্যে ২০১৯ – ২১ পর্যন্ত এক কর্মপরিকল্পনা তৈরি করে। আর্জেন্টিনার আধুনিকীকরণ বিষয়ক সচিব ডঃ অ্যান্ড্রেস ইবারা পররাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিব (পূর্ব) শ্রীমতী বিজয় ঠাকুর সিং ভারতের গ্লোবাল সেন্টার ফর নিউক্লিয়ার এনার্জি পার্টনারশিপ এবং আর্জেন্টিনার শক্তি বিষয়ক সচিবালয়ের মধ্যে সমঝোতা। শক্তি বিষয়ক সচিবালয়ের পরমাণু সংক্রান্ত আধিকারিক মিঃ ওসভালদো ক্যালজেটা লরি আর্জেন্টিনায় নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শ্রী সঞ্জীব রঞ্জন তথ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত উৎকর্ষ কেন্দ্র তথ্য ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে ভারত ও আর্জেন্টিনার মধ্যে চুক্তি পররাষ্ট্র মন্ত্রী মিঃ জর্জ ফরি তাঁর জন্মবার্ষিকীতে জানাই আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ (১৮ই জুলাই, ২০১৮) ভারতের ইনস্টিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ ইন্ডিয়া (আইসিএআই) এবং আয়ারল্যান্ডের ইনস্টিটিউট অফ সার্টিফায়েড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্টস (সিপিএ)-এর মধ্যে এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল। শ্রী মোদীবলেন, সমাজ সংস্কারের কাজেভারতের আধ্যাত্মিক প্রতিষ্ঠানগুলি এক একটি কেন্দ্র হয়েউঠেছে। পর্যটনকে ভারতের এক প্রাচীন ধারণা ছাড়াও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য বলে বর্ণনা করেনতিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যে আশ্রমটির আজ উদ্বোধন হচ্ছে, তা হরিদ্বারে আগতপূণ্যার্থীদের কল্যাণসাধন করবে। ভারতীয়সংস্কৃতির একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ হিসেবে ‘যাত্রা’র ধারণাটি উঠে এসেছে বলে মনে করেনপ্রধানমন্ত্রী। লিঙ্গ সমতা সম্পর্কে সচেতনতারও প্রসার ঘটেছে এর ফলে। মেহ্‌সানাজেলার মহিলাদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানিয়ে তিনি বলেন যে ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’বার্তাকে তাঁরা নানাদিকে ছড়িয়ে দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কাবুলের কাছে সন্ত্রাসবাদী হামলার নিন্দা করে এই ঘটনায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “জঙ্গী হামলার খবর পেয়ে আমি ক্ষুব্ধ। এই মননশূন্য হিংসাকে নিন্দা করি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সৌরশক্তি ক্ষেত্রে ভারতে সৌর শক্তির ব্যবহার বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারত ও জার্মানির মধ্যে ২০১৫-র অক্টোবরে সাক্ষরিত ‘মউ’-এর অনুমোদন দিয়েছে। এই মউ দুই দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক শক্তিশালী করতে সহায়তা করবে। চুক্তি অনুযায়ী জার্মানি ‘ক্রেডিটান্‌সটাল্‌ট ফুর ওয়েইডেরাউফ্‌বাউ’ (কেএফডব্লু)-এর মাধ্যমে ভারতকে পাঁচ বছরের জন্য এক বিলিয়ন ইউরো সহজ সুদে ঋণ দেবে। আমাকে বলা হয়েছিল যে, লন্ডন খুব শীতল হবে। নয়াদিল্লি , ২৬ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ শনিবার (২১ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫) ভূটানের রাজা জিগমে খেসার নামগিয়াল ওয়াংচুক -এর জন্মদিন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, “ভূটানের রাজা মহামান্য জিগমে খেসার নামগিয়াল ওয়াংচুক’কে তাঁর জন্মদিনে শুভেচ্ছা জানাই। তাঁর দীর্ঘ ও সুস্থ জীবন কামনা করি।” রাজ্যে প্রতিরক্ষা করিডরের শিলান্যাস এবং ২৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝাঁসি – খাইরার শাখার বিদ্যুতায়নের কাজের সূচনা করবেন পাহাড়ি বাঁধের আধুনিকীকরণ প্রকল্পের সূচনা এবং বুন্দেলখন্ডে জল সরবরাহ প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন তিনি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (১৫ ফেব্রুয়ারি) ঝাঁসি সফর করবেন। সেখানে তিনি একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন বা শিলান্যাস করবেন। শ্রী মোদী উত্তর প্রদেশের ঝাঁসি-তে প্রতিরক্ষা করিডর গড়ে তোলার কাজের শিলান্যাস করবেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, প্রধানমন্ত্রী গত বছরের ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর প্রদেশ বিনিয়োগকারী সম্মেলনে রাজ্যের বুন্দেলখন্ড অঞ্চলে এ ধরণের একটি প্রতিরক্ষা করিডর স্থাপনের কথা ঘোষণা করেছিলেন। এরপর, প্রধানমন্ত্রী ২৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝাঁসি – খাইরার শাখায় বিদ্যুতায়নের কাজের সূচনা করবেন। এই শাখায় বিদ্যুতায়নের কাজ শেষ হলে ট্রেনের গতিবেগ বাড়বে, কার্বন নিঃসরণ কমবে এবং পরিবেশ সুরক্ষা বজায় রাখা যাবে। উত্তর প্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলে নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের জন্য প্রধানমন্ত্রী পশ্চিম – উত্তর আন্তঃএলাকা বিদ্যুৎ পরিবহণ সুসংহতকরণ প্রকল্পে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। সকলের কাছে পরিশ্রুত পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে সরকারের কর্মপরিকল্পনার অঙ্গ হিসাবে প্রধানমন্ত্রী বুন্দেলখন্ডের গ্রামীন এলাকায় পাইপ বাহিত জল সরবরাহেরও সূচনা করবেন। খরা প্রবণ বুন্দেলখন্ড অঞ্চল এই জল সরবরাহ প্রকল্পের ফলে ব্যাপক লাভবান হবে। এছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী অম্রুত কর্মসূচির আওতায় ঝাঁসি শহরে পানীয় জল সরবরাহের দ্বিতীয় পর্যায়ের প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন। শ্রী মোদী ঝাঁসিতে রেল কামরার রক্ষণা-বেক্ষণ সংক্রান্ত এক ওয়ার্কশপের শিলান্যাস করবেন। ওয়ার্কশপটি গড়ে উঠলে বুন্দেলখন্ড অঞ্চলে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হবে। এরপর, প্রধানমন্ত্রী ৪২৫ কিলোমিটার দীর্ঘ ঝাঁসি – মানিকপুর এবং ভীমসেন – খাইরার শাখার ডবল রেল লাইন স্থাপনের কাজের সূচনা করবেন। দ্বিতীয় রেল লাইন স্থাপনের কাজ শেষ হলে এই শাখায় ট্রেনের চলাচলে গতি আসবে এবং সমগ্র বুন্দেলখন্ড অঞ্চলের সার্বিক উন্নয়নে সহায়ক হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের প্রিয়তম অটলজি-কে জন্মদিনের শুভেচ্ছা জানাই। এই মহান ব্যক্তিকে প্রণাম করি, যিনি এক জটিল সময়ে ভারতকে এক ব্যতিক্রমী নেতৃত্ব দান করেছেন। শুক্রবার সন্ধ্যায় দিল্লিতে অবতরণ করার পর আমি সোজা অটলজির বাসস্থানে যাব এবং তাঁকে ব্যক্তিগতভাবে শুভেচ্ছা জানাব। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী এদিন তাঁর ট্যুইটার-এ তিনি ১৯৪৬-এ ‘অভ্যুদয়’ সাপ্তাহিকীতে প্রকাশিত অটল বিহারী বাজপেয়ীর লেখা একটি কবিতা শেয়ার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১১ সেপ্টেম্বর ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কোয়েম্বাটোরের শ্রীরামকৃষ্ণ মঠ আয়োজিত স্বামী বিবেকানন্দের শিকাগো বক্তৃতার ১২৫তম বার্ষিকীর সমাপ্তি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন যে, এই অনুষ্ঠান থেকে স্বামীজির ভাষণের প্রভাব, ভারত বিষয়ে পাশ্চাত্যের ধ্যান-ধারণার পরিবর্তন এবং ভারতের চিন্তাভাবনা ও দর্শনের স্বীকৃতি বিষয়ে বোঝা যায়। ভাষণের বার্ষিকী উদযাপন থেকে স্বামীজির ভাষণের প্রভাব প্রমাণিত হয়েছে। রামকৃষ্ণ মঠ ও মিশন, তামিলনাড়ু সরকার এবং এই অনুষ্ঠানে সমবেত হাজার হাজার যুবকবৃন্দকে তিনি অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, সাধু-মহাত্মাদের অনন্য সাত্ত্বিক গুণ ও শক্তি এবং উপস্থিত যুববৃন্দের উৎসাহ হচ্ছে ভারতের প্রকৃত শক্তির প্রতীক। আমি অনেক দূর থেকে বক্তব্য রাখলেও আমি এই শক্তি অনুভব করতে পারি। বন্ধুগণ, স্বামী বিবেকানন্দের এই ভাষণের মধ্য দিয়ে ভারতীয় সংস্কৃতি, দর্শন এবং প্রাচীন ঐতিহ্যের আলো বিশ্বময় ছড়িয়ে পড়েছে। বহু মানুষ তাঁর এই শিকাগো বক্তৃতা বিষয়ে লিখেছেন। আজকের এই অনুষ্ঠানেও তাঁর ভাষণের মূল বিষয়গুলি নিয়ে আলাপ-আলোচনা হয়েছে। বিদেশি শাসকরা, তাদের বিচারকরা, তাঁদের ধর্ম প্রচারকরা আমাদের হাজার হাজার বছরের জ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যকে নিচু প্রতিপন্ন করার কোন সুযোগ ছাড়েনি। স্বামী বিবেকানন্দ যে শুধুমাত্র সমগ্র বিশ্বেই ছাপ রেখে গেছেন তাই নয়, আমাদের দেশের স্বাধীনতা আন্দোলনেও তিনি নতুন শক্তি এবং নতুন আস্থা যুগিয়েছিলেন। সম্প্রতি এশিয়ান গেম্‌স-এ আমাদের খেলোয়াড়রা দেখিয়ে দিয়েছে যে আমরা যত দরিদ্রই হই না কেন, আমরা যে পরিবার থেকেই উঠে আসি না কেন, আস্থা এবং কঠোর পরিশ্রমের মধ্য দিয়ে আমি দেশকে আমার জন্য গর্ব অনুভবের সুযোগ দিতে পারি। এছাড়াও, আমাদের সরকার যুবকদের স্বপ্নকে বাস্তবে পরিণত করতে ব্যাঙ্কের দরজা তাঁদের কাছে উন্মুক্ত করে দিয়েছে। ‘মুদ্রা’ যোজনার আওতায় ১৩ কোটিরও বেশি অর্থের ঋণ এ পর্যন্ত দেওয়া হয়েছে। দেশের গ্রাম এবং শহরগুলিতে স্ব-রোজগার বৃদ্ধির ক্ষেত্রে এই যোজনা বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে শুধুমাত্র দারিদ্র্য দূরীকরণ নয়, দেশের দারিদ্র্যের প্রধান কারণকেই উচ্ছেদ করতে হবে। আমি আপনাদের মনে করিয়ে দিতে চাই যে, আজকের দিনেই ৯ / ১১-তে মুম্বাইয়ে সেই কুখ্যাত সন্ত্রাসবাদী হামলার ঘটনা ঘটেছিল, যা সারা বিশ্বে আলোড়ন তুলেছিল। স্বামীজি বলেছিলেন, “যে ধর্ম বিশ্বকে সহিষ্ণুতা এবং সার্বজনীন গ্রহণযোগ্যতার আদর্শের শিক্ষা দিয়েছে, সেই ধর্মের মানুষ হিসেবে আমি গর্ববোধ করি।” ‘আলোচনা’ এবং ‘সিদ্ধান্তে’র ঐতিহ্য আমাদের রয়েছে। আমাদের শাশ্বত মূল্যবোধেই রয়েছে গণতন্ত্র ও বিতর্ক। আমাদের মনে রাখতে হবে যে, আমাদের এত সম্পদ সত্ত্বেও যখনই ভারতীয় সমাজে বিভাজন দেখা দিয়েছে, যখনই আমরা অভ্যন্তরীণ সংঘাতে লিপ্ত হয়েছি, তখনই বহিরাগত শত্রুরা তার সুবিধা নিয়েছে। সংগ্রামের সেই সময়কালে আমাদের সাধু-মহাত্মারা, সমাজ সংস্কারকরা সঠিক পথ দেখিয়েছেন – যে পথে আমরা আবার একত্রিত হতে পারি। আমাদের স্বামী বিবেকানন্দের অনুপ্রেরণায় নতুন ভারত গড়ে তুলতে হবে। বিভিন্ন স্কুল এবং কলেজে যে সব হাজার হাজার ছাত্রবন্ধু স্বামীজির কথা পড়েছেন এবং তাঁর বার্তা অনুধাবন করেছেন, বিভিন্ন প্রতিযোগিতায় অংশ নিয়েছেন এবং পুরস্কার লাভ করেছেন, তাঁদের প্রত্যেককে আমি অভিনন্দন জানাই। আপনাদের সবাইকে আমি আবার ধন্যবাদ জানাই। গুড ইভনিং ফ্রেন্ডস আপা কাবার? দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে শ্রীলঙ্কায় জীবনহানির ঘটনায় সমবেদনা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে শ্রীলঙ্কায় প্রাণহানির ঘটনায় আমার গভীর শোক ও সমবেদনা জানাই। শ্রীলঙ্কার সরকার এবং জনসাধারণের সঙ্গে সহায়তা করার জন্য আমরা সঙ্কল্পবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার (২৯ অক্টোবর) জাপানের টোকিওতে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া : আফ্রিকায় ভারত-জাপান অংশীদারিত্ব এবং ডিজিটাল অংশীদারিত্ব’ শীর্ষক সেমিনারে ভাষন দেন। ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করতে এবং দেশবাসীর জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার যে গুরুত্ব আরোপ করেছে, প্রধানমন্ত্রী তার কথা বিশদে ব্যাখ্যা করেন। ভারতে বহু সংখ্যক জাপানী সংস্হা থাকায় তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। দেশে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ শিল্পোদ্যোগে জাপানের অংশিদারিত্বের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বিগত চার বছরে ভারতের অর্থনৈতিক কাজকর্মের খতিয়ান তুলে ধরেন। তিনি বলেন, ভারত আজ দ্রুততম বিকাশশীল অর্থনীতিগুলির একটি। দেশীয় অর্থ ব্যবস্হাকে অপ্রচলিত রীতিনীতি থেকে প্রচলিত রীতিনীতি অনুকরণের পথে নিয়ে আসতে ডিজিটাল লেনদেন সহ অভিন্ন পণ্য পরিষেবা কর চালু করার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বৈদ্যুতিন লেনদেনের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভারতের উদীয়মান অর্থনীতি, মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের সংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধি এবং মোট জনসংখ্যায় যুব সম্প্রদায়ের আধিক্য জাপানী বিনিয়োগকারীদের কাছে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার দরজা খুলে দিয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি স্বল্পমূল্যে উৎপাদনের সুবিধা, তথ্যপ্রযুক্তি শিল্প এবং ইলেকট্রিক মোবিলিটি বা বৈদ্যুতিন গতিশীলতার কথাও উল্লেখ করেন। ভারত ও জাপানের মধ্যে অভিন্ন মূল্যবোধের ব্যাপারেও প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন। কমনওয়েলথ গেমস্‌-এ পদক জয়ী ভারতীয় ক্রীড়াবিদদের অভিনন্দিত করেছেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আমাদেরভারোত্তোলকদের এই অনবদ্য সাফল্য ভারোত্তোলন প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণের জন্য আরও বেশিসংখ্যক তরুণদের উদ্বুদ্ধ করবে বলে আমার বিশ্বাস। মহিলাদের ৬৯ কিলোগ্রাম ভারোত্তোলন বিভাগে স্বর্ণপদক জয়ী পুনম যাদবকে ভারতেরঅভিনন্দন। ভারোত্তোলনের ক্ষেত্রে তাঁর নিষ্ঠা বিশেষভাবে প্রশংসনীয়”। তাঁকেও আমার অভিনন্দন জানাই। মহিলাদের ১০ এম এয়ার পিস্তল বিভাগে রৌপ্য পদক জয়ী হীনা সিধুর জন্য আমরাখুবই আনন্দিত। আমি তাঁকে অভিনন্দন জানাই, শুভেচ্ছা জানাই তাঁর ভবিষ্যৎ প্রচেষ্টারজন্য। পুরুষদের ১০ এম এয়ার রাইফেল বিভাগে ব্রোঞ্জ পদক লাভ করেছেন আমাদেরসম্ভাবনাময় শ্যুটার রবি কুমার। তাঁর এই সাফল্যে গর্বিত প্রত্যেক ভারতীয়। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে সামগ্রিকভাবে দেশের সমগ্র অঞ্চল ও সব শ্রেণীর মানুষ উপকৃত হবেন। প্রিয় বাপুর পুণ্যতিথিতে আমার শ্রদ্ধা জানাই”। জাতির সেবায় যাঁরা আত্মবলিদান দিয়েছেন, সেই সমস্ত শহীদদের শৌর্য ও সাহসিকতার কথাও স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আইন কমিশনের সুপারিশ এবং সংশ্লিষ্টদের থেকে পাওয়া পরামর্শ বিবেচনা করে আরবিট্রেসন এন্ড কনসিলিয়েশন বিল,২০১৫-এ সংশোধনীতে অনুমোদন দিয়েছে। ভারত সরকার সংসদে আরবিট্রেসন এন্ড কনসিলিয়েশন (সংশোধনী) বিল,২০১৫ এনে আরবিট্রেসন এন্ড কনসিলিয়েশন এ্যাক্ট,১৯৯৬ সংশোধন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ১।সালিশির (আরবিট্রেসন)নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে, ১২ ধারাটি সংশোধনের প্রস্তাব করা হয়েছে, যাতে সম্ভাব্য সালিশকারের (আরবিট্রেটর)পদে নিযুক্তির ক্ষেত্রে ঐ সম্ভাব্য সালিশকারকে লিখিত ভাবে জানাতে হবে যে, তার এমন কোনো ধরণের সম্পর্ক বা স্বার্থ আছে কিনা, যা যুক্তিসঙ্গত সন্দেহ উদ্রেক করতে পারে। তিনি যদি নির্দিষ্ট কোনো সম্পর্কের সূত্রে আবদ্ধ থাকেন, তবে তিনি আরবিট্রেটর হিসাবে নিয়োগের জন্য অনুপযুক্ত বলে বিবেচিত হবেন। ২।নতুন একটি ধারা স্ংযোজিত করা হচ্ছে, আরবিট্র্যাল ট্রাইবুনাল ১২ মাসের মধ্যে তার মঞ্জুরি দেবে। সংশ্লিষ্ট পক্ষভুক্ত কেউ সেই সময় ছয় মাস পর্যন্ত মেয়াদ বাড়াতে পারেন। তারপর শুধু আদালতই উপযুক্ত কারন বিবেচনা করে তা বাড়াতে পারবে। সময় বাড়াতে গিয়ে যদি আদালত প্রমান পায় যে, আরবিট্রেটরের কারণে প্রক্রিয়া দেরি হয়েছে, তবে আরবিট্রেটর বা আরবিট্রেটরদের ভাতা কমিয়ে দিতে পারে, কিন্তু তা বিলম্বকালের মাসিক ভাতার পাঁচ শতাংশের বেশি নয়। আবার যদি আরবিট্রেটর ছয় মাসের মধ্যে সিদ্ধান্ত দিতে পারেন, তবে পক্ষভুক্ত রাজি থাকলে আরবিট্রেটর অতিরিক্ত ভাতাও পেতে পারেন। ৩।আরবিট্রেসন দ্রুত সম্পন্ন(ফাস্ট ট্র্যাক) করার জন্য নতুন একটি ধারা স্ংযোজিত করার প্রস্তাব রাখা হয়েছে। ৫।নতুন একটি ধারা রাখা হচ্ছে যাতে, মঞ্জুরিকে বিরোধিতা করে আদালতে আবেদন করলে, একবছরের মধ্যে সেই মামলা নিষ্পত্তি করতে হবে। ৬।মঞ্জুরিকে বিরোধিতা করে আবেদন জমা করলেই তা স্বাভাবিকভাবে মঞ্জুরি রূপায়ন স্থগিত না করতে ৩৬ নম্বর ধারায় সংশোধন আনা হচ্ছে। এটি আরবিট্রেটর ও আদালতের আইনি প্রক্রিয়া, উভয় ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। তুচ্ছ ও গুরুত্বহীন আইনি প্রক্রিয়া ও আরবিট্রেশনগুলিকে এটি বাদ দেবে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি ঘানি, মহামান্য মুখ্য কার্যনির্বাহী ড. আব্দুল্লা, আপনারা ইতিহাসের এক বাঁকে দাঁড়িয়ে আছেন। আমরা একইরকম গর্বিত যে, আফগানিস্তানের মানুষ ভারতকে তাঁদের শিক্ষা, স্বাস্থ্য অথবা পারিবারিক বাসস্থানের স্বাভাবিক পছন্দ হিসাবে গণ্য করেন| আমরা স্মরণ করি আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামে আফগানিস্থানের মানুষের সহায়তা; সীমান্ত গান্ধী হিসেবে সম্মানিত খান আব্দুল গফ্ফর খানের অবদান; এবং সেই ইতিহাসের গুরুত্বপূর্ণ পাদটীকা, যখন ঠিক একশ বছর আগে, মহারাজা মহেন্দ্র প্রতাপ এবং মৌলানা বরকতউল্লাহ আফগানিস্তানের কাবুলে প্রথম নির্বাসিত ভারতীয় সরকার গঠন করেন| এবং আপনারা যখন নতুন শতাব্দীতে নতুন যাত্রা শুরু করেন, আমরা তখন গর্বের সাথে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি এবং আপনাদের সঙ্গে একসাথে পা বাড়িয়েছি| গ্রামীণ এলাকার মানুষের কাছে বিদ্যালয়, ক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থা, স্বাস্থ্য কেন্দ্র পেতে এবং শিশু কল্যাণমূলক সুবিধা ও মহিলাদের জন্য সুযোগ গড়ে তুলতে আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতা সহায়তা করেছে। আমরা মিলিত প্রয়াসে নির্মিত সড়কগুলোর মাধ্যমে বিভিন্ন অঞ্চলকে নিকটবর্তী করেছে; যৌথ উদ্যোগে নির্মিত বিদ্যুৎ পরিবহন লাইন এবং বিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলি আফগান জনগনের বাড়ি-ঘরে আলো জ্বালিয়েছে; তেমনি উপগ্রহ সংযোগ আফগান জনগণের কাছে এনে দিয়েছে শিক্ষা, চিকিৎসা পরামর্শ এবং যোগাযোগ ব্যবস্থা। এবং আমরা নিরাপত্তাবাহিনীগুলিকে আরো গতিশীল হতে সহায়তা করছি। আমরা মিলিতভাবে যেসব প্রতিষ্ঠান প্রতিষ্ঠা করছি সেগুলি আফগানিস্তানে কৃষি ও খনি ব্যবস্থাকে পুনর্নির্মাণে সহায়তা করছে এবং কাবুলে অত্যাধুনিক চিকিৎসা পরিষেবা পেতে সাহায্য করছে। একটি দেশের কাছে মানবিক সম্পদের চেয়ে আর কোনো কিছুই বেশি গুরুত্বপূর্ণ নয়। তাই আমরা আনন্দিত যে, আমাদের মেধাবৃত্তি স্কিম ও প্রশিক্ষণ কর্মসূচিগুলির মাধ্যমে আফগান যুবকরা আধুনিক শিক্ষা ও পেশাদারি দক্ষতার মাধ্যমে সক্ষম হতে পারছে; আফগান সরকারও সে সম্পদ দিয়ে দেশকে উন্নত করতে পারছে, এবং আফগান নিরাপত্তাবাহিনী তাদের দেশকে সুরক্ষিত রাখতে সক্ষমতা পাচ্ছে। খুব শীঘ্রই সালমা বাঁধ থেকে বিদ্যুৎ ও জল নির্গত হবে। স্তোর প্যালেস পুনরায় আপনাদের অমূল্য ঐতিহ্যের প্রতীক হিসেবে প্রতিষ্ঠিত হবে। আফগান ছাত্র-ছাত্রীদের জন্য প্রতিবছর ১০০০-টি বৃত্তি দেওয়ার ব্যাপারে ভারতের প্রকল্প অব্যাহত থাকবে। কৃষিবিজ্ঞান সম্পর্কিত আমাদের বিশেষ বৃত্তিমূলক প্রকল্পের প্রতি সদুত্তর পেয়ে আমরা খুবই আনন্দিত। আজ, আমি আফগান নিরাপত্তাবাহিনীর শহিদদের সন্তানদের জন্য ৫০০-টি বৃত্তিদানের কথা ঘোষণা করছি। যেহেতু আমরা আপনাদের দেশকে পুনর্নির্মাণ করতে আমাদের প্রয়াস নিয়ে আপনাদের পাশে দাঁড়িয়েছি, আপনারাও আমাদের জনগণকে আপনাদের নিজেদের বলে গ্রহণ করে সুরক্ষা দিয়েছেন। আমরা প্রতিদিনই হুমকির মুখোমুখি হচ্ছি, কিন্তু আমরা আপনাদের মাঝখানে নিরাপদ বোধ করছি। প্রতিটি আফগান নাগরিকের প্রতি আমি ভারতের দিক থেকে স্বর্গীয় কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, যিনি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে অথবা প্রাণ বিসর্জন দিয়ে ভারতীয় অতিথিকে সুরক্ষিত রেখেছেন| এখানে গর্বের সঙ্গে কাজ করছেন যেসব ভারতীয় কূটনীতিবিদ, আধিকারিক, ইঞ্জিনিয়ার ও ডাক্তার – তাদের প্রতি এবং, ভারতীয় শহিদদের পরিবারবর্গের প্রতি আমি ভারতীয়দের ও আফগানদের হয়ে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি। কেউ কেউ আছে, যারা চায় না আমরা এখানে থাকি। এমনকী কেউ কেউ আবার আমাদের নিরুৎসাহিত করতে চেয়েছে। কিন্তু, আমরা এখানে আছি, কারণ আপনারা আমাদের উপর আস্থা রাখেন। আপনারা কখনোই আমাদের প্রতিশ্রুতি এবং আমাদের বন্ধুত্বের শক্তির প্রতি সন্দেহ প্রকাশ করেননি। এবং আপনারা আমাদের বন্ধুত্বের সুফল দেখতে পেয়েছেন। আপনারা যা দেখেছেন তার ভিত্তিতে আমাদের বিচার করেছেন; অন্যেরা কি বলেছে, এমনকি রহস্যময় ভারতীয় দূতাবাস সম্পর্কেও যা বলেছে, তাতে ভরসা রাখেননি। আপনারা জানেন যে ভারত এখানে অবদান রাখতে এসেছে, প্রতিযোগিতা করতে নয়; ভারত এসেছে ভবিষ্যতের ভিত্তি স্থাপন করতে, সংঘর্ষের অগ্নিশিখা জালাতে নয়; ভারত এসেছে জীবন পুনর্নির্মাণ করতে, একটি দেশকে ধ্বংস করতে নয়। আপনারা জানেন, আমরা যেভাবে করি, ভারতীয়রা এবং আফগানরা সবসময়ই পরস্পরের পাশে দাঁড়ায়, কখনোই একে অপরের বিরুদ্ধে নয়। আপনারা ইতিহাসের এক বাঁকে দাঁড়িয়ে আছেন। এবং আপনাদের ইতিহাস আমাদের বলছে যে আপনারা কখনোই আপনাদের এক প্রতিযোগিতামূলক নাট্যের কুশিলব হয়ে উঠতে দেবেন না; অথবা অপরের নক্সা অনুযায়ীও কাজ করবেন না। কবি কুশল খান খাট্টাক যেভাবে জাতির সম্মান ও জাতির খ্যাতিকে প্রশংসার সঙ্গে তুলে ধরেছেন, আপনাদের কাজে জীবনও সেই রকম জাতির গৌরব নিয়ে বেঁচে থাকা, জীবনই তাদের কাছে অগ্রাধিকার পায়। তাই, আপনাদের বিশ্বাস ও আশ্বাস ক্রমে আফগান সমৃদ্ধি অনুযায়ী আপনারা যাতে আপনাদের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে পারেন সেজন্য আফগানদের প্রশাসনিক, নিরাপত্তা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে দক্ষতা অর্জনের জন্য ভারত তার কাজ করে যাবে। বন্ধুত্ব থেকে যে দায়িত্ব আসে আমরা সেখানে থেকে কাজ করে যাব। কিন্তু, আমরা আমাদের অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রতি প্রতিশ্রুতি রক্ষা করতে এই কাজ করব। আমরা জানি আফগানিস্তানের সাফল্যের জন্য তার প্রতিটি প্রতিবেশীর কাছ থেকে সহযোগিতা ও সহায়তা দরকার। এবং, এই অঞ্চলের আমরা সবাই ভারত, পাকিস্তান, ইরান ও অন্যান্যরা-অবশ্যই আমাদের অভিন্ন গন্তব্যকে স্বীকৃতি জানিয়ে এবং আমাদের অভিন্ন প্রয়োজনীয়তার পরিপ্রেক্ষিতে বিশ্বাস ও সহযোগিতার ভিত্তিতে ঐক্যবদ্ধ হব। আফগানিস্তান যখন শান্তির স্বর্গ হয়ে উঠবে এবং যে কেন্দ্রটি থেকে এঅঞ্চলে বাণিজ্য, শক্তি ও বিনিয়োগের প্রবাহ বইতে থাকবে, তখন আমরা সবাই মিলিতভাবে সমৃদ্ধ হব। সেইজন্য আমরা ইরানের চাভাহারের মাধ্যমে এবং সেই সঙ্গে স্থল ও সমুদ্র পথে আপনাদের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নকল্পে আমরা কাজ করছি। সেইজন্যই আমি আশা করি দক্ষিণ এশিয়া ও আফগানিস্তান এবং তারও পরে বিস্তৃত অঞ্চলে যোগসূত্রের সেতু হয়ে উঠবে পাকিস্তান। আমি আশা করি, সেদিন খুব শীঘ্রই আসবে, যখন আমাদের এঅঞ্চলে মধ্য এশিয়া থেকে সমৃদ্ধির শক্তি হিসেবে শক্তি আসবে; যখন কাবুলিওয়ালারা পুনরায় সহজেই ভারতীয় হৃদয় জয় করতে পেরিয়ে আসবে পথ; যখন ভারতে আমরা আফগানিস্তানের অনুপম ফল আস্বাদন করব; যখন আফগানদেরও ভারত থেকে তাদের পছন্দের জিনিসপত্র কিনতে আর চড়া মূল্য দিতে হবে না। এটাই হল এই অঞ্চলের ইতিহাসের ধারা। এবং এটাকে অবশ্যই এর ভবিষ্যতের পথ হয়ে উঠতে হবে। কিন্তু, সাহসিকতার সঙ্গে ও অক্লান্তভাবে দেশকে রক্ষা করার জন্য লড়াকু আফগানদের আফগানিস্তান একমাত্র তখনই সফল হবে যখন আর তার সীমান্ত বরাবর প্রবাহিত হবে না সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ; যখন সন্ত্রাসবাদের আশ্রয়স্থল ও মুক্তোদ্যানগুলি বন্ধ হয়ে যাবে; এবং যখন তাদের পৃষ্ঠপোষকরা আর বাণিজ্য করতে পারবে না। সন্ত্রাস ও হিংসা আফগানিস্তানের ভবিষ্যকে রূপদানের যন্ত্র হতে পারে না অথবা আফগানদের পছন্দকেও নিয়ন্ত্রন করা যাবে না এইভাবে। আফগানিস্তানে যে আগুন জ্বলেছে তা কখনোই সীমানার ভেতর আবদ্ধ থাকতে পারে না। আফগানরা তাদের প্রতিবেশীদের সঙ্গে শান্তি বজায় রাখতে সদিচ্ছা রাখে, কিন্তু একই সঙ্গে তাদের স্বাধীনতাকে রক্ষা করারও সাহস রয়েছে। এবং আফগানদের অবশ্যই সমস্ত দিক থেকে তাদের নিজেদের মধ্যে শান্তি বজায় রাখারও অধিকার রয়েছে। কাবুল নদী দিয়ে বয়ে গেছে অনেক রক্ত। পর্বতের ঢাল বেয়ে অনেক বিষাদময় ঘটনার অন্ধকার নেমে এসেছে। অনুভূতিহীন সংঘর্ষের আগুনে দগ্ধ হয়েছে অনেক স্বপ্ন। হতে পারেন আপনারা পুস্তুন, উজবেক, তাজিক্স, হাজারাস্। আপনারা হতে পারেন মুসলিম, হিন্দু ও শিখ। কিন্তু, আপনারা আফগান হিসেবে গর্বিত, এক দেশ, এক জাত ও এক মানুষ হিসেবে আপনারা একত্রিত। আপনারা ধর্মের নামে লড়াই করতে পারেন; অথবা লড়াই করতে পারেন পরিচিতির জন্য। কিন্তু, আফগানদের জন্য শান্তির প্রয়োজনে পরস্পরের কাছে আসার সময় হয়েছে। যেমন একজন প্রজ্ঞাবান আফগান বলেছেন, কোনো তিক্ত বীজের গাছকে যদি চিনি ও মাখন খাইয়ে বড় করা হয়, তথাপি ওটাতে তেতো ফলই গজাবে। আপনাদের আছে বহুত্ববাদের গৌবরময় ঐতিহ্য এবং বৈচিত্র্য ও বহুমুখি বিশ্বাসের প্রতি শ্রদ্ধা। যারা বাড়ি-ঘর ধ্বংস করেছে, তাদের অবশ্যই এখন নিজেদের দেশকে গড়ে তুলতে হবে। কেননা, এটা করতে হবে আপনাদের দেশের জন্য, আপনাদের জনগণের জন্য। এবং, এটা অবশ্যই আপনাদের মেধার উপর নির্ভর করে, আপনাদের নিজেদের প্রক্রিয়া ও ভ্রাতৃত্ববোধের উদ্দীপনার মাধ্যমে অর্জনের ক্ষেত্রে আপনাদেরই পালা। অন্যদের হিসাব নিকাশ অথবা উচ্চাকাঙক্ষার দ্বারা চালিত হয়ে নয়। এবং, বিগত দেড় দশক ধরে শান্তি ও আলোচনার মাধ্যমে বহু কষ্টে যে ভবিষ্যৎ আপনারা গড়ে তুলছেন তা অবশ্যই সুরক্ষিত করতে হবে। প্রতিটি আফগানের জন্যই এখানে একটা স্থান থাকতে হবে। এখানে অবশ্যই প্রতিটি ব্যক্তির আশা-আকাঙক্ষার স্থান থাকতে হবে। এবং এটা এমনই এক দেশ হতে হবে, যেখানে প্রতিটি নাগরিকেরই থাকবে তার অধিকার এবং ভবিষ্যতের প্রতি তার আস্থা। এবং, যেহেতু আফগানরা তাদের ভবিষ্যতের দায়িত্ব তুলে নিয়েছেন, তাই বিশ্বকে অবশ্যই তাদের পাশে সৌভ্রাতৃত্ব ও সহায়তা নিয়ে দাঁড়াতে হবে। আমরা অবশ্যই যেসব সৈনিক বিদেশ থেকে এসেছে এবং যারা যেসব আফগান গ্রামের কথা কখনো শোনেনি, যেসব আফগান জনগণের কথা কখনো জানেনি, তাদের জন্য জীবন দিয়েছে যারা, তাদের জন্য কিছু করব; এবং যারা আফগানদের জন্য অপরিসীম আত্মত্যাগ করেছে, জীবন দিয়েছে তাদের কথাও মনে রাখতে হবে। আমরা সময় সীমার কথা ছাড়াই আফগানিস্তানকে সহায়তা করব, কেননা উগ্রবাদ ও সন্ত্রাসবাদের নতুন মেঘ ঘনিয়ে উঠছে, এমনকি পুরোনো মেঘেও ছেয়ে যাচ্ছে আমাদের আকাশ; এবং এজন্যেও, কারণ আফগানরা শুধু তাদের ভবিষ্যতের জন্যই লড়াই করছে না, উপরন্তু তারা আমাদের সবার জন্য রুখে দাঁড়িয়েছে। বিশ্ব তখনই এক উত্তম স্থান হবে, যখন আমরা আফগান জনগণের প্রকৃত সম্পদ, তাদের বৈচিত্র ও সমৃদ্ধি ঐতিহ্যের বিষয়গুলি অনুধাবন করতে পারব। সমস্ত আফগানদের, এই অঞ্চল এবং বিশ্বের অন্যান্য সমস্ত অঞ্চলের মানুষকে একসাথে এসে পাশাপাশি দাঁড়ানোর এখন সময় এসেছে| এই আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না। আশার আলোকশিখা কখনোই নির্বাপিত হবে না। কোনো বালিকাই আর সুযোগের অভাবে পদস্খলিত হয়ে নিমজ্জিত হবে না অন্ধকার দুনিয়ায়। কোনো পুত্রকেই আর বন্দুক বেছে নেওয়ার মুখে পড়তে হবে না অথবা আশ্রয় নিতে হবে না দূর দেশে। কোনো মা-কেই আর তার সন্তানকে এই পৃথিবীতে নিয়ে আসার সময় সন্ত্রস্ত হতে হবে না। কোনো নেতাকেই আর আফগান স্বাধীকারের জন্য বন্ধু বেছে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলার কারণে হারাতে হবে না তার ভাইকে। কাউকেই আর মসজিদে নতজানু অবস্থায় প্রার্থনাকালে ধর্মের নামে নিহত হতে হবে না। কোনো প্রবীণকেই, যার যৌবন সংঘর্ষের মাঝে বিফল হয়েছে বলে, পেছন ফিরে তাকাতে হবে না এবং তার পৌত্রের জন্য দেখতে হবে না অনুরূপ ভবিষ্যৎ। প্রতিটি যুবকই আফগানিস্তানে দেখতে চায় এমন এক ভবিষ্যৎ যেখানে ‘আইটি’-র মানে ‘ইনফরমেশন টেকনোলজি’ (তথ্য-প্রযুক্তিই), তা কখনোই ‘ইন্টারন্যাশনাল টেরোরিজম’ (আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ) নয়। একুশ শতকের এই প্রতিশ্রুতি ও সুযোগ বিশ্বের আর অন্যান্যদের মতো আফগান যুবকদের কাছেও একই রকম। ভারতের জন্য এ এক গভীরতর প্রতিশ্রুতি। আপনাদের দুর্ভোগ আমাদের বেদনা। আপনাদের স্বপ্ন আমাদের কর্তব্য। আপনাদের শক্তি আমাদের বিশ্বাস। আপনাদের সাহস আমাদের অনুপ্রেরণা। সর্বোপরি, আপনাদের বন্ধুত্ব আমাদের সম্মান। এবং হিন্দি চলচ্চিত্রের সবচেয়ে বিখ্যাত পাঠান চরিত্র শের খান ‘জঞ্জির’ ছবিতে যেমন গেয়েছেন, বন্ধুত্ব আমার বিশ্বাস, বন্ধু আমার জীবন। এ হল আফগান ও ভারতীয়দের ধর্ম-বিশ্বাস। আমি এ বিষয়ে প্রত্যয়ী যে আপনাদের গৃহে আশা-আকাঙ্ক্ষার প্রত্যাবর্তন হবে, হাসি ফিরে আসবে আপনাদের বিদ্যালয়গুলিতে, আপনাদের রাস্তায় ফিরে আসবে জীবন, আপনাদের নগরীগুলিতে আসবে জীবন, আপনাদের সমাজে আসবে ঐক্য এবং শান্তি ফিরে আসবে আপনাদের দেশে। এবং আপনাদের যাত্রার প্রতিটি পদক্ষেপে ভারত থাকবে আপনাদের সঙ্গে। এই সম্মান ও সুযোগ দেওয়ার জন্য ফের ধন্যবাদ জানাই আপনাদের। গত ১৮ সেপ্টেম্বর জম্মু ও কাশ্মীরের উরিতে জঙ্গীহানারঘটনায় নিহত ও আহতদের জন্য সমবেদনাও প্রকাশ করেন তিনি। সন্ত্রাসের মোকাবিলায় ভারত ওফ্রান্সের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তোলার অঙ্গীকারগ্রহণ করেন ফ্রান্সের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী। ভারত-ফ্রান্স প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বর্তমান পরিস্থিতিসম্পর্কেও তিনি অবহিত করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে। আমরা একটি ‘অ্যাক্ট ইস্ট ’ নীতি প্রণয়ন করেছি আরউত্তর-পূর্ব ভারত রয়েছে তার হৃদয়ে । এই নীতি অনুযায়ী মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ বৃদ্ধি, বাণিজ্যচুক্তি এবংভারতের পূর্বে অবস্থিত দেশগুলি বিশেষ করে আসিয়ান দেশগুলির সম্পর্ক বৃদ্ধির প্রয়োজনরয়েছে । আসিয়ান-ভারত অংশীদারিত্ব, ২৫ বছর পুরনো হতে পারে কিন্তুআমাদের পারস্পরিক সম্পর্ক হাজার হাজার বছর পুরনো । ভারতের সৌভাগ্য যে, এ বছর নতুনদিল্লিতে আমাদের প্রজাতন্ত্র দিবস উদযাপনের ১০টি আসিয়ান দেশের প্রধানরা সম্মানিতঅতিথি রূপে উপস্থিত ছিলেন । সম্প্রতি, বিশ্বের প্রথম দেশ হিসাবে বাংলাদেশ গুয়াহাটিতেএকটি কন্স্যুলেট খুলেছে । ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং অতিক্ষুদ্রশিল্পকে অগ্রাধিকার প্রদান আমাদের শিল্পনীতির মেরুদন্ড । এর দ্বারা দেশে প্রায় ৯৯ % কোম্পানি লাভবান হবে । পণ্য ও পরিষেবা কর চালুকরার পর ব্যবসার ব্যবহারিক ক্ষেত্রে ক্ষুদ্র, মাঝারি এবং অতিক্ষুদ্র শিল্পগুলিরআর্থিক লাভ হয়েছে । এখনসরকার আগামি তিন বছর সমস্ত ক্ষেত্রে নতুন কর্মচারিদের জন্য ১২ % হারে অর্থ ইপিএফ-এ জমা দেবে । এবারের বাজেটে নতুন কর্মচারিদের আয়করআইন অনুযায়ী দেয় করের ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ৩০ % ছাড় দেওয়া হয়েছে । দেশ থেকে দুর্নীতি দূরীকরণ এবংব্যবস্হায় দক্ষতা ও স্বচ্ছতা আনতে আমরা দেশের সর্বত্র আয়করের ই-অ্যাসেসমেন্ট চালুকরছি । তাছাড়ামহিলা কর্মচারিদের ক্ষেত্রে প্রথম তিন বছরে দেয় ইপিএফ-এর বর্তমান হার ১২ % থেকে কমিয়ে ৮ % করা হয়েছে । এই কেন্দ্রীয় সরকার বিগত ৩ বছরেআর্থিক সংস্কারের মাধ্যমে এ রকম অনেক বাণিজ্য প্রক্রিয়াকে সরল করেছে । তারই ফল হিসেবে ভারত আজবাণিজ্য পরিচালনায় সরলীকরণের ক্ষেত্রে ৪২ ধাপ এগিয়ে বিশ্বের ১৯০টি দেশের মধ্যে১০০তম স্হানে পৌঁছে গেছে । ‘ ওয়ার্ল্ড ইকোনমিক ফোরাম ’ এবং ‘ মুডিস ’ -এর মতো বিশ্বের আরও অনেক রেটিংসংস্হার সমীক্ষায় আরও অনেক ক্ষেত্রে ভারতের স্হান অনেক উন্নত হয়েছে । আমাদের সঠিক নীতির ফলে আমরামুদ্রাস্ফীতিকে ৫ % -এরনীচে রাখতে পেরেছি । এখনআমাদের বিনিময়যোগ্য বিদেশী মুদ্রা সংরক্ষিত আছে ৪১৮ বিলিয়ন ইউএস ডলার । অটোমোবাইলস্, বস্ত্র,পর্যটন, বন্দর এবং সড়কপথে যাতে বিভিন্ন ক্ষেত্রে ১০০ % বিদেশী বিনিয়োগ হতে পারে তাসুনিশ্চিত করার ফলে এখন ভারত প্রত্যক্ষ বিদেশী বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম পছন্দেরঠিকানা হয়ে উঠেছে । ২০১৬-১৭সালে ভারত সর্বোচ্চ ৬০ বিলিয়ন ইউএস ডলার বিদেশী মুদ্রা অর্জন করেছে । আজ সারা পৃথিবী ভারতকে অর্থনৈতিকউন্নয়নের ক্ষেত্রে একটি উদীয়মান শক্তি হিসেবে দেখছে । আমি খুশি যে আসামউত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির মধ্যে সহজে ব্যবসা চালু করার ক্ষেত্রে প্রথম স্হান অধিকারকরেছে । আমিনিশ্চিত যে রাজ্য সরকারের বর্তমান নেতৃত্বের সময়কালে আসাম আরও উন্নতি করবে এবংদেশের শিল্প বিনিয়োগকারী রাজ্যগুলির মধ্যে সবচাইতে দ্রুত গতিতে উন্নতি করবে । আমরা ভারতমালা প্রকল্পেরমাধ্যমে ৩৫ হাজার কিলোমিটার সড়কপথ উন্নয়নের জন্য ৫.৩৫ লক্ষ কোটি টাকা প্রদানকরেছে । এই২০১৮-১৯ সালে রেল ১.৪৮ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগ করবে । আমাদেরলক্ষ্য হল আগামী বছরগুলিতে ৬০০টি বড় রেলস্টেশন পুনর্নিমাণ করা । আমি আর একবার আসাম তথা উত্তরপূর্বভারতের জনগণকে এই বিশাল উ ৎ সব আয়োজন উপলক্ষে শুভেচ্ছা জানাই । আসিয়ান এবং বাংলাদেশ-ভুটান-ইন্ডিয়া-নেপাল গোষ্ঠীভুক্তদেশগুলির আন্তর্জাতিক বিনিয়োগকারী শীর্ষ সম্মেলনে অংশগ্রহণকারী প্রতিনিধিদেরধন্যবাদ জানাই । আমি নিশ্চিত যে এই শীর্ষ সম্মেলনএকটি সূচনা মাত্র যা আপনাদের সঙ্গে হাজার হাজার বছরের প্রাচীন সম্পর্কের ইতিহাসেএকটি নতুন অধ্যায় সংযোজন করবে । বিমস্টেক অঞ্চলে সর্বোচ্চ মাত্রায় বিদ্যুৎ সংবহন ব্যবস্থাকে উন্নত করেতুলতেই এই মউ স্বাক্ষরের প্রস্তাব। এর আওতায় সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষের কল্যাণে একটিপ্রশস্ত কাঠামো গড়ে তোলা হবে যার মাধ্যমে পারস্পরিক সহযোগিতার ভিত্তিতে বিমস্টেকরাষ্ট্রগুলি জ্বালানির সর্বোচ্চ ব্যবহার ও উৎপাদনের কাজে উদ্যোগ গ্রহণ করতে পারবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ‘কেরালা পিরাভি’ দিবস উপলক্ষে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস্‌ দিবস উপলক্ষে শনিবার নয়াদিল্লিতে এক বিশেষ সমাবেশে ভাষণ দেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বিমুদ্রাকরণসহ কেন্দ্রীয় সরকার গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেনযে, দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে গত তিন বছরে সরকার নানাভাবে অভিযান চালিয়েএসেছে, যাতে দুর্নীতিগ্রস্তদের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো যায়। শ্রী মোদীবলেন, বিমুদ্রাকরণ পরবর্তী পর্যায়ে অন্তত তিন লক্ষ সংস্থাকে কঠোর নজরদারির আওতায়নিয়ে আসা হয়েছে। যৌথ ডাকটিকিটগুলি গত ২৬ জুলাই প্রকাশ করা হয়। সাফাই কর্মচারীদের জাতীয় কমিশনে উপাধ্যক্ষ এবং সদস্যের একটি করে পদ সৃষ্টির বিষয়টির অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ এই সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হবার ফলে, কমিশনের কাজকর্ম আরও জোরদার হবে এবং এই গোষ্ঠীর মানুষের কল্যাণ ও উন্নয়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করা সম্ভব হবে। দুজনের মধ্যে আলাপচারিতায় দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সাম্প্রতিক উন্নয়ন সম্পর্কে ডঃ মোমেন প্রধানমন্ত্রীকে অবগত করেন। শ্রী মোদী বলেন, বিগত কিছু বছরে ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্কে যথেষ্ঠ উন্নতি ঘটেছে। চিনের ক্যুইনডাও সফরে রওনা হবার পূর্বে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর বিবৃতি। সাংহাই সহযোগিতা সংগঠনের (এসসিও) রাষ্ট্রপ্রধানদের বার্ষিক বৈঠকের জন্য আমি চিনের ক্যুইনডাও সফরে যাচ্ছি। সংগঠনের পূর্ণ সদস্য হিসেবে প্রথমবার বৈঠকে যোগ দেওয়ার জন্য ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই সংগঠনের পূর্ণ সদস্য হওয়ার পর থেকে বিগত এক বছরে সংগঠনের সদস্য দেশগুলির সঙ্গে ভারতের এ সংক্রান্ত বিষয়ে যোগাযোগ ও সম্পর্ক লক্ষ্যনীয়ভাবে বেড়েছে। সংগঠনের সদস্য দেশগুলির সঙ্গে ভারতের মৈত্রিপূর্ণ ও বহুমুখী সম্পর্ক রয়েছে। “ পি ভি সিন্ধু তুমি দারুণ সাফল্য দেখিয়েছ। ভারত ’ কে গর্বিত করেছ তুমি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নভরে উপলক্ষে জনসাধারণকে শুভেচ্ছাজানিয়েছেন। নববর্ষের সূচনায় প্রত্যেকেরজীবন যাতে সুখ, সমৃদ্ধি ও সুস্বাস্থ্যে ভরে ওঠে আমি সেই কামনাই করি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি কুয়ালা লামপুরে আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের প্রধানমন্ত্রী শ্রী লি কেকিয়াং-এর সঙ্গে বৈঠক করেন| এই চুক্তি দুই দেশের মধ্যে অপরাধের তদন্ত ও মামলা দায়ের, অভিযুক্তদের হদিশ, অপরাধ দমন, অপরাধে কাজে লাগানোর হাতিয়ার বাজেয়াপ্ত বা নিজেদের হেফাজতে নেওয়ার মতো ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার জন্য এক বিস্তৃত আইনি কাঠামো প্রদান করবে। নয়াদিল্লি , ১৭ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ “ভারতীয় প্রশাসনিক সেবার প্রথম ও মুখ্য দায়িত্ব হওয়া উচিত জনস্বার্থ, অর্থাৎ গণতন্ত্রের মৌলিক বিষয়টিকে প্রাধান্য দেওয়া।” এটিই গণতন্ত্রের সত্তা, বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জানান, সম্প্রতি তিনি কেন্দ্র সরকারের প্রত্যেকজন সচিবকে উপদেশস্বরূপ বলেছেন, তাঁদের প্রথম কর্মস্থানে গিয়ে দেখতে সেইসব জায়গায় কিরকম পরিবর্তন ঘটেছে, যদিও তাঁরা কর্মজীবনে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছেন। তিনি বলেন, কোন পদে তাঁরা চাকুরি করছেন না ভেবে, তাঁরা গরিব মানুষদের জীবন কতটা বদলাতে পেরেছেন তার ভিত্তিতে নিজেদের বিচার করুন। প্রধানমন্ত্রী জানান, আজকের দিনে বহু সরকারি চাকুরির সমান চাকুরি বেসরকারি ক্ষেত্রেও পাওয়া যায়। সেইজন্য সরকারি আধিকারিকদের নিজ নিজ ক্ষেত্রে সেরাদের, এমনকি আন্তর্জাতিক মানের সঙ্গে নিজেদের প্রদত্ত পরিষেবার তুলনামূলক বিচার করতে হবে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বিকাশ ও সেই অঞ্চলে বিচ্ছিন্নতাবোধ সমাপ্ত করা সম্পর্কিত প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, মূল সমস্যা নীতি নিয়ে নয়, বরং রীতি নিয়ে। তিনি জানান, এক এক সময়ে দেশের অন্যান্য অঞ্চলের আধিকারিকরা উত্তর-পূর্বে স্থানান্তকরণ এড়িয়ে যেতে চেয়েছেন। উত্তর-পূর্বের পরিকাঠামোগত উন্নয়নসাধনের মাধ্যমে ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তোলার বিষয়টির ওপর প্রধানমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন। তিনি বলেন, পরিকাঠামোর উন্নতি হলে উত্তর-পূর্ব ভারত এগিয়ে যেতে পারবে। আরেকটি প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী জানান, তাঁর দৃঢ় বিশ্বাস যে একবিংশ শতকটি ভারতের হবে এবং ভারত বিশ্বগুরু`র পর্যায়ে উন্নীত হবে। এই প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে, বিশ্ব পুনরায় ভারতের দ্রুত অর্থনৈতিক বিকাশ হার লক্ষ্য করছে। দেশের সামরিক প্রস্তুতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে একটি বহুমুখী পদ্ধতি গ্রহণ করা জরুরি যাতে প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখা যায় এবং দেশের অভ্যন্তরীণ সামরিক উৎপাদন ক্ষমতার প্রসার করা সম্ভব হয়। তুঙ্গভদ্রা ইস্পাতউৎপাদন লিমিটেডকে (টিএসপিএল) বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভারঅর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির সিদ্ধান্তকে বাস্তবায়িত করার প্রস্তাবটি আজঅনুমোদন লাভ করল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এর ফলে, টিএসপিএল-এর হিসাব সংক্রান্ত বাধ্যবাধকতা মিটে যাওয়ারপরে রেজিস্ট্রার অফ কোম্পানিজ-এর তালিকা থেকে সংস্থাটিকে বাদ দেওয়া হবে। এমএমএইচ প্ল্যান্টটি ২০ হাজার বর্গ মিটার জমি সহ কর্ণাটক সরকারের অনুকূলেহস্তান্তরের প্রস্তাবও অনুমোদন লাভ করেছেকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি জাবুয়াতে সিলিন্ডার বিস্ফোরনে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন| প্রধানমন্ত্রী এক বার্তায় বলেন, “জাবুয়াতে সিলিন্ডার বিস্ফোরন দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে গভীরভাবে ব্যাথিত। নিহতের পরিবারবর্গের প্রতি গভীর সমবেদনা জানাচ্ছি। আমি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করছি। মধ্যপ্রদেশ সরকার পরিস্থিতির ওপর নিবিড়ভাবে নজর রেখে চলেছে।” মধ্যপ্রদেশেরতেকানপুরের বিএসএফ অ্যাকাডেমিতে পুলিশ বাহিনীর ডিজি এবং আইজিদের একসম্মেলনেরসমাপ্তি অনুষ্ঠানে আজ ভাষণ দেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০১৪ সালথেকে এই সম্মেলনের উদ্যোগ-আয়োজন শুধুমাত্র দিল্লির মধ্যেই সীমাবদ্ধ না রেখে দেশেরঅন্যত্রও পর্যায়ক্রমে প্রসারের ফলে যে সুযোগ ও সম্ভাবনার সৃষ্টি হয়েছে সে সম্পর্কেসকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই পরিবর্তন নিশ্চিত করার জন্য সরকারিআধিকারিকদের ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি। দেশের বর্তমান চ্যালেঞ্জ ও দায়-দায়িত্বেরপরিপ্রেক্ষিতে এই সম্মেলন যে আরও প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে, একথার উল্লেখ করে। শ্রীমোদী বলেন, সম্মেলনের কর্মসূচিতে পরিবর্তন নিয়ে আসার ফলে একদিকে যেমন আলোচনারক্ষেত্র আরও বিস্তৃত হয়েছে, অন্যদিকে আলোচনার মানও বৃদ্ধি পেয়েছেতাৎপর্যপূর্ণভাবে। দেশকেসুরক্ষিত করে তুলতে দেশের বর্তমান নিরাপত্তা ব্যবস্থা যে বিশেষ উপযোগী, একথা শ্রীমোদী তুলে ধরেন সম্মেলনের সমাবেশে। তিনি বলেন, সম্মেলনে উপস্থিত আধিকারিকরা পরিচয়দিয়েছেন পরিস্থিতির মোকাবিলায় তাঁদের নেতৃত্বদানের ক্ষমতার, যদিও অনেক সময়েইতাঁদের প্রতিকূল পরিস্থিতিতে কাজ করে যেতে হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই ধরনেরসম্মেলন থেকে শীর্ষস্থানীয় পুলিশ আধিকারিকরা বিভিন্ন সমস্যা ও চ্যালেঞ্জ সম্পর্কেএকটি সার্বিক দৃষ্টিভঙ্গিও গড়ে তুলতে পারেন। গত দু’বছরে আলোচনার বিষয়সূচির পরিধিঅনেক প্রসারিত হয়েছে। সুতরাং, বরিষ্ঠ পুলিশ আধিকারিকদের কাছে নিঃসন্দেহেচিন্তাভাবনার এক নতুন জগৎ তা মেলে ধরেছে। সার্বিক প্রচেষ্টায় দক্ষতা ও সাফল্য নিশ্চিত করতে তা অনেকটাই সাহায্যকরবে বলে মনে করেন তিনি। অবৈধ আর্থিকলেনদেন সম্পর্কে বিশ্বব্যাপী যে জনসচেতনতা ও সহমতের ঐকমত্যের সৃষ্টি হয়েছে সেকথারউল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাপালনের দায়িত্ব রয়েছে ভারতের। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে এইভাবে সুস্পষ্ট ধারণা গড়েতোলার পাশাপাশি বিভিন্ন রাষ্ট্রের মধ্যেও আরও বেশি করে সমন্বয় ও সহযোগিতার প্রসারঘটানো প্রয়োজন বলে মনে করেন তিনি।তাঁর মতে, বিশেষত সুরক্ষা ও নিরাপত্তার মতোবিষয়গুলিতে রাষ্ট্রগুলির মধ্যে সমন্বয়ের বাতাবরণ গড়ে তোলার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। শ্রী মোদীবলেন, নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করা একা কিংবা মাত্র কয়েকজনের পক্ষে সম্ভব নয়। এই কারণেবিভিন্ন রাষ্ট্রের প্রয়োজন বিচ্ছিন্নতার মানসিকতাকে কাটিয়ে উঠে তথ্য বিনিময়েরমাধ্যমে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া। শ্রী মোদী বলেন, আমাদেরঅস্তিত্ব শুধুমাত্র সমষ্টিগতভাবে উপস্থিতির মধ্যেই নিহিত নয়, আমরা যে সচল ও সজীবতাও আমাদের প্রমাণ করে দেখাতে হবে। সাইবারনিরাপত্তার বিষয়গুলি সম্পর্কে যে অনতিবিলম্বেই ব্যবস্থা গ্রহণ প্রয়োজন, এ কথারউল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, সাইবার নিরাপত্তাকে সর্বোচ্চ মাত্রায় অগ্রাধিকার দিতেহবে। পদক জয়ীআধিকারিকদের তাঁদের কাজের সাফল্য ও কৃতিত্বের জন্য অভিনন্দিত করেন তিনি। নেপালে ৫০ হাজার বাড়ি পুনর্নির্মাণের জন্য ভারত সরকারের আবাসন অনুদান ব্যবহারের নীতি-পদ্ধতি বিষয়ে সমঝোতা শ্রী শান্তা রাজ সুবেদী, অর্থ মন্ত্রকের সচিব শ্রী এস জয়শঙ্কর, বিদেশ সচিব, পররাষ্ট্র মন্ত্রক নেপালের শিক্ষা ক্ষেত্রে ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠন প্যাকেজের অনুদান অংশের রূপায়ণ বিষয়ে সমঝোতা নেপালের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ক্ষেত্রে ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠন প্যাকেজের অনুদান অংশের রূপায়ণ বিষয়ে সমঝোতা নেপালের স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে ভূমিকম্প পরবর্তী পুনর্গঠন প্যাকেজের অনুদান অংশের রূপায়ণ বিষয়ে সমঝোতা এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক অর্থনৈতিক সহযোগিতা ব্যবস্থার আওতায়, সড়ক সংযুক্তি প্রকল্পে (দ্বিতীয় দফার অর্থ প্রদান) ভারত সরকারের আর্থিক সহায়তায় মেচি সেতু নির্মাণ প্রকল্পের রূপায়ণ, ব্যয়ভারের অংশীদারিত্ব, সময়সূচি এবং রক্ষাকবচ বিষয়ে সমঝোতা শ্রী দেবেন্দ্র কারকি, পরিকাঠামো ও সড়ক মন্ত্রকের সচিব শ্রী যুধবীর সিং মালিক, সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রকের সচিব মাদকের চাহিদা হ্রাস, বেআইনি মাদক এবং অন্যান্য উত্তেজক রাসায়নিক দ্রব্য চোরাচালান প্রতিরোধ সংক্রান্ত সমঝোতা শ্রী লোক দর্শন রেগমি, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের সচিব শ্রী হাসমুখ আধিয়া, রাজস্ব সচিব, অর্থ মন্ত্রক মানক এবং মান বিষয়ে পর্যালোচনার ক্ষেত্রে সহযোগিতা সংক্রান্ত চুক্তি শ্রী বিশ্ববাবু পুড়াসিনি, মহানির্দেশক, নেপাল ব্যুরো অফ স্ট্যান্ডার্ডস্‌ মেট্রোলজি শ্রী সঞ্জয় সিং, মহানির্দেশক, ব্যুরো অফ ইন্ডিয়ান স্ট্যান্ডার্ডস্‌ ইন্সটিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস্‌ অফ ইন্ডিয়া এবং ইন্সটিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস্‌ অফ নেপাল-এর মধ্যে সমঝোতা শ্রী প্রকাশ জে থাপা, সভাপতি, ইন্সটিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্টেন্টস্‌ অফ নেপাল ভারত ও রোয়ান্ডার মধ্যে বাণিজ্যমূলক সহযোগিতার কাঠামো গড়ে তোলার বিষয়টিতে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। এ বছর ২৩শে জুলাই বাণিজ্য সংক্রান্ত সহযোগিতামূলক কাঠামোটি স্বাক্ষরিত হয়। বিজয় দিবসে সশস্ত্র বাহিনীর সাহসিকতা ও অদম্য শক্তিকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, “আজ বিজয় দিবসে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর বীরত্ব ও অদম্য শক্তিকে জানাই শ্রদ্ধা ও সম্মান। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ক্যান্সার নিয়ে গবেষণার উদ্যোগে ভারত এবং ব্রিটেনের মধ্যে সমঝোতাপত্রটি অনুমোদন করা হল। ইন্ডিয়া-ইউকে ক্যান্সার রিসার্চ ইনিশিয়েটিভ একটি পথদিশা বানিয়েছে যাতে যুক্ত করা হবে গবেষক, বৈজ্ঞানিক, স্বাস্থ্য পরিষেবাদানকারী সংস্থা ও অন্যান্য বিভিন্ন সংশ্লিষ্ট মহলকে যাতে কম খরচে ভালো চিকিৎসা করা যায়। এই উদ্যোগের ফলে উচ্চমানের গবেষক এবং গবেষণায় আগ্রহীদের সংখ্যাও বাড়বে। আইএনএসভি তারিনী জলযানে করে সফল বিশ্ব পরিক্রমা শেষে ভারতীয় নৌ-বাহিনীর ৬ জন মহিলা আধিকারিক বুধবার (২৩ মে) নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। কেবল মহিলাদের নিয়েই নাবিকরা সাগর পরিক্রমা নামের এই অভিযান ছিল জলপথে ভারতীয়দের প্রথম বিশ্ব পরিক্রমা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় নৌ-বাহিনীর ঐ ছয় মহিলা আধিকারিক এই অভিযানের বিভিন্ন দিক, তাঁদের প্রস্তুতি, প্রশিক্ষণ ও সফরের অভিজ্ঞতা বর্ণনা করেন। বিশ্ব পরিক্রমা অভিযান সফল হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী তাঁদের অভিনন্দন জানান। সফরের অভিজ্ঞতা অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার পাশাপাশি লিখে রাখার ব্যাপারেও তাঁদেরকে উৎসাহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতার সময় নৌ-সেনা প্রধান অ্যাডমিরাল সুনীল লাম্বা-ও উপস্থিত ছিলেন। এক বিপুল সংখ্যক ভারতীয়দের বাস এই দেশে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে অর্থনৈতিক কর্মব্যস্ততা আমাদের সম্পর্ককে আরও গভীর করে তুলেছে। সিঙ্গাপুর হল আমাদের দশম বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদার। আসিয়ান গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে এক্ষেত্রে দ্বিতীয় বৃহত্তম অবদান হল এই দেশটির। ২০০৫ সালের সুসংবদ্ধ অর্থনৈতিক সহযোগিতা চুক্তি সম্পাদনের পর থেকে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের প্রসার ঘটেছে বহুগুণে। ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সিঙ্গাপুর হল দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস। একইভাবে, সিঙ্গাপুরে ভারতের বিনিয়োগ সাম্প্রতিককালে বৃদ্ধি পেয়েছে বেশ উল্লেখযোগ্য হারে। তাই, ভারতীয় বিনিয়োগকারীদের কাছে সিঙ্গাপুরের স্থান এখন শীর্ষে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত মাসে সিঙ্গাপুরের সক্রিয় অংশগ্রহণে দুটি প্রকল্পের শিলান্যাস করেছেন তিনি। এই সমস্ত ঘটনাই হল আমাদের দৃঢ় অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব সম্পর্কে আমাদের চিন্তাভাবনা ও দৃষ্টিভঙ্গীর ক্ষেত্রেও সিঙ্গাপুর হল আমাদের এক সহযোগী বন্ধু রাষ্ট্র। ‘পুবের দিকে তাকাও’ এবং ‘পূবের জন্য নীতি রূপায়ণ কর’– এর বাস্তবায়নে সিঙ্গাপুরকে আমাদের এক ঘনিষ্ঠ সহযোগী বলেই আমরা মনে করি। তবে, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা ছাড়াও অন্যান্য দেশগুলির সঙ্গে সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারত ও সিঙ্গাপুর রয়েছে পরস্পরের সঙ্গেই। উদাহরণস্বরূপ, আসিয়ান-এর অর্থনৈতিক গোষ্ঠীর কথা উল্লেখ করা যেতে পারে। দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় সুযোগ-সুবিধার সম্ভাবনা সৃষ্টি ও তা সদ্ব্যবহারের ফলে দুটি দেশই উপকৃত হবে নানাভাবে। আঞ্চলিক ক্ষেত্রে যে সুসংহত অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব গড়ে উঠেছে তার মধ্যে রয়েছে আসিয়ানভুক্ত সবক’টি দেশ এবং তাদের সঙ্গে আলোচনারত ছ’টি সহযোগী রাষ্ট্র। এই ক্ষেত্রগুলিতেও দু’দেশের শিল্প সংস্থাগুলি নতুন নতুন সুযোগ ও সম্ভাবনার সদ্ব্যবহার করতে পারে। সম্প্রতি নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত ভারত-আফ্রিকা ফোরাম শীর্ষ বৈঠকে এক বিশেষ আমন্ত্রিত দেশ হিসেবে উপস্থিত ছিল সিঙ্গাপুর। ভারত-সিঙ্গাপুরের ঘনিষ্ঠ মৈত্রী সম্পর্কের ক্ষেত্রে এই ঘটনা এক নতুন মাত্রা যোগ করেছে। গত বছর আমাদের উন্নয়নের হার ছিল ৭.৩ শতাংশ। এ বছর এই মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে বলে বিশ্ব ব্যাঙ্ক এক পূর্বাভাসে জানিয়েছে। প্রধান প্রধান দেশগুলির মধ্যে দ্রুততম হারে বেড়ে উঠছে ভারতীয় অর্থনীতি। সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এর সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দিতে আমরা এখন কঠোর পরিশ্রম করে চলেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রান্তিক মানুষের কাছে আর্থিক সুযোগ-সুবিধা আমাদের পৌঁছে দিতেই হবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে ইতিমধ্যেই দেশে খোলা হয়েছে ১৯ কোটি নতুন ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট। এই অ্যাকাউন্টগুলির মাধ্যমে আর্থিক সহায়তার সুফল দরিদ্র মানুষের কাছে যাতে পৌঁছে যায় তা আমরা নিশ্চিত করেছি। শুধু তাই নয়, এই ব্যবস্থায় সরকারি ব্যয়ের ক্ষেত্রেও এসেছে শৃঙ্খলা। আমরা চালু করেছি নতুন নতুন বিমা ও পেনশন প্রকল্পও। মুদ্রা ব্যাঙ্ক ব্যবস্থায় ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অর্থ সহায়তার ব্যবস্থা করেছি আমরা। সকলের জন্য বাসস্থান, জল, বিদ্যুৎ এবং স্বাস্থ্য ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমরা বেঁধে দিয়েছি লক্ষ্যমাত্রা পূরণের সময়সীমা। আর এইভাবেই, ভারত এখন পৌঁছে গেছে এক অর্থনৈতিক বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে। ‘ডিজিটাল ভারত’ এবং ‘দক্ষ ভারত’ কর্মসূচি দুটির পরিকল্পনা করা হয়েছে এমনভাবে যাতে এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্ত করা যায় সাধারণ মানুষকেও। সাম্প্রতিক মাসগুলিতে গড়ে উঠছে নতুন নতুন স্টার্ট আপ শিল্প সংস্থা। তার মধ্যে বেশ কয়েকটি বিশ্বের বড় বড় শিল্পোদ্যোগীদের চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন করে দিয়েছে। এই মাত্রাকে আমাদের অবিলম্বে ২৫ শতাংশে উন্নীত করা প্রয়োজন। আর এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই আমরা চালু করেছি ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগ। বাজারে শৃঙ্খলা রক্ষার কাজে বিভিন্ন রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থায় আমাদের বিনিয়োগের মাত্রাও আমরা উল্লেখযোগ্যভাবে কমিয়ে আনছি। বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে আমাদের দেশের অর্থনীতির সংহতিসাধন আমাদের আরেকটি প্রধান লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সংস্কার ও উন্নয়নের কাজে আমাদের পরিচালিত করছে দুটি প্রাথমিক প্রতিশ্রুতি। আমাকে এইভাবে যথেষ্ট আন্তরিকতা ও ভালোবাসার মধ্য দিয়ে স্বাগত জানানোর জন্য ধন্যবাদ আপনাদের সকলকে। আপনাদের এই ভালোবাসা ও অভ্যর্থনা আমার এই দেশ সফরের ঘটনাকে আরও তাৎপর্যময় করে তুলেছে। নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ-এ আমি হাজার হাজার নতুন ও মূল্যবান পরামর্শ লাভ করেছি। আপনারা এই সমস্ত পরামর্শ ও মতামত আমার সঙ্গে আপনাদের এই আলাপচারিতার মুহূর্তকে আরও সুন্দর করে তুলেছে। কিন্তু, আমাদের সাধারণ সাংস্কৃতিক, ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক ঐতিহ্য নিশ্চিতভাবেই আমাদের পরস্পরকে যুক্ত করেছে অনেক নিবিড়ভাবে। আমাদের সম্পর্ক তাই মন ও হৃদয় দু’দিক থেকেই। চরম দারিদ্র্য ও দুঃখ-দুর্দশা ভোগ করতে হয়েছিল তাঁদের। তা সত্ত্বেও সমস্ত কিছু সহ্য করে তাঁরা ছিলেন অবিচলিত। বরং তাঁরা এগুলিকে আরও বিকশিত করে তুলেছিলেন। তাই, দক্ষিণ আফ্রিকার সমাজ আজ আরও সমৃদ্ধ হয়ে উঠেছে হিন্দি, তামিল, গুজরাটি, উর্দু এবং তেলেগু ভাষার সহাবস্থানে। হোলি উৎসবের রং, দেওয়ালির আতস বাজি, পোঙ্গলের স্বাদ এবং ঈদ উৎসব ভারতীয় সংস্কৃতির ঐতিহ্যের রামধনু মাত্র নয়। একই সঙ্গে, তারা দক্ষিণ আফ্রিকার উজ্জ্বল বৈচিত্র্যেরও প্রতীক। এর বাস্তবতা আমরা খুঁজে পাই, এই দেশের আর্থ-সামাজিক কল্যাণে আপনাদের অশেষ অবদানের মধ্যে। আপনাদের মধ্যে অনেকেই হয়তো জানেন না যে, আপনাদের পূর্ব পুরুষদের এমন একটি অবদান রয়েছে যেজন্য আপনাদের গর্বিত হওয়া উচিৎ। ভারতীয় বংশোদ্ভূত ব্যক্তিদের বিশ্বে সাফল্যলাভের মূলে রয়েছে সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও আপনাদের পূর্ব প্রজন্মগুলির সাফল্য ও অবদান। এই শহর এবং শহরবাসী আমাদের অনেক স্মৃতিরই ধারক ও বাহক। এই ভূমিতেই মহত্মা গান্ধী তাঁর রাজনৈতিক ধারণাকে গড়ে তুলতে পেরেছিলেন। সত্যাগ্রহের জন্ম এখানেই। দক্ষিণ আফ্রিকাই মোহনদাসের রূপান্তর ঘটিয়েছিল মহাত্মা-তে। কিন্তু বর্ণবিদ্বেষ দেশের অত্যাচার ও নির্যাতনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে গান্ধী একা ছিলেন না। দক্ষিণ আফ্রিকার মুক্তি সংগ্রামে আপনাদের পূর্ব প্রজন্মের অনেক বীর ও সাহসী সামিল হয়েছিলেন। ষোড়শ বর্ষীয় ভালিয়াম্মা, অকুতোভয় হাম্বি নাইডু এবং নিঃস্বার্থ মহম্মদ কাচালিয়া’কে বিস্মৃত হওয়া খুবই কঠিন। আজ এখানে কিছুক্ষণ আগে আহমেদ কাথারদার সঙ্গে সাক্ষাৎ ঘটেছিল আমার। নেলসন ম্যান্ডেলার সঙ্গে তিনিও ছিলেন দীর্ঘ ২৬ বছর ধরে কারাবন্দী। এই দেশের প্রতি নিষ্ঠ আপনাদের সকলকে, অগণিত জনসমস্টিকে আমি অভিবাদন জানাই। শুধু তাই নয়, সমগ্র বিশ্বে ক্রমবর্ধমান ভারতীয় পরিবারগুলির আপনারা এক অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আমাদের দুটি দেশের মধ্যে এক অতুলনীয় সেতুবন্ধন গড়ে তোলার দায়িত্বও পালন করে এসেছেন আপনারা। এ হল এমনই এক বন্ধন, যা গড়ে উঠেছে আমাদের মিলিত মূল্যবোধ ও সংগ্রামের মধ্য দিয়ে। আর এই সম্পর্ককে ভিত্তি করেই আমরা এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যত গড়ে তোলার প্রতিজ্ঞা গ্রহণ করেছি। এ হল মাদিবার জন্মভূমি এবং মহাত্মা গান্ধীর কর্মভূমি। এই দুই মহান নেতা আমাদের যে পথের সন্ধান দিয়ে গেছেন এবং যে স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন আমাদের জন্য তা সমগ্র মানবজাতিকেই উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা জুগিয়ে যাবে। তাঁদের নিরলস কর্মশক্তি, সাহস ও নৈতিক মূল্যবোধ আগামী বহু প্রজন্ম ধরেই আলোর সন্ধান দিয়ে যাবে। নেলসন ম্যান্ডেলার সহমর্মিতা ও স্বাধীনতার লক্ষ্যে তাঁর দীর্ঘ অভিযানের ফলশ্রুতিতেই উদ্ভব ও জন্ম এই রামধনু জাতির। গান্ধীজীর কাছে দক্ষিণ আফ্রিকা ছিল খুব প্রিয় একটি দেশ। আমরা বাস করি এমনই এক বিশ্বে, যা পরস্পর সংযুক্ত এবং একে অপরের ওপর নির্ভরশীল। ভারতে বিকাশ ও উন্নয়নের কাজে আপনাদের অনেকেই এখন ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত রয়েছেন। আপনাদের পূর্ব পুরুষদের জন্মস্থানের সঙ্গে যোগাযোগের বাসনা নিঃসন্দেহে আবেগ-অনুপ্রাণিত। কিন্তু, শুধুমাত্র তাকে সম্বল করেই এগিয়ে গেলে চলবে না আপনাদের। কারণ, ভারতে রয়েছে এখন অফুরন্ত সুযোগ। বিশ্বের অন্যত্র যখন বিকাশের হার ক্রমহ্রাসমান, অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টা মন্দার দিকে, ভারতে তখন এই বছরে বিকাশ ও উন্নয়নের হার ৭.৬ শতাংশ পরিলক্ষিত হয়েছে। এই হারকে আগামী বছরগুলিতে ৮ শতাংশ এবং তারও বেশি নিয়ে যেতে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছি আমরা। ভারতীয় অর্থনীতির প্রেক্ষাপটে আমূল পরিবর্তন সম্ভব করে তোলা হল আমাদের এক বলিষ্ঠ অঙ্গীকার। আর এই পরিবর্তন তথা রূপান্তরের লক্ষ্য হল : আমরা চাই, শিল্পোদ্যোগের প্রসার সম্ভব করে তোলা এবং বাণিজ্যিক কর্মপ্রচেষ্টাকে জোরদার করে তোলার মাধ্যমে দেশের সার্বিক বিকাশ ও উন্নয়ন ঘটানো। এই লক্ষ্যে ইতিমধ্যেই নীতিগত এক কাঠামো নির্ণয় করে ফেলেছি আমরা, যা নির্মাণ ও উৎপাদন শিল্প, উদ্ভাবন এবং বাণিজ্য ও বিনিয়োগের জন্য বিশ্বের অন্যান্য দেশের সঙ্গে অংশীদারিত্বের বন্ধন গড়ে তুলতে শক্তি যোগাবে ভারতকে। বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলার মাধ্যমে আমরা চাই সরকারি, বেসরকারি এবং ব্যক্তিগত বাণিজ্যিক উদ্যোগগুলি পূর্ণ সম্ভাবনার সঙ্গে বিকশিত হোক ভারতে। অত্যাধুনিক পরিকাঠামোকে সম্বল করে এই লক্ষ্যে এগিয়ে যেতে আগ্রহী আমরা। বিশ্বের বিশিষ্ট তথ্য ও প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের শক্তি ও সমর্থনকে আশ্রয় করে এক ডিজিটাল বিপ্লব সম্ভব করে তোলার লক্ষ্যেও এগিয়ে চলেছি আমরা। এ হল এমনই এক বিপ্লব, যা পরিবর্তন সম্ভব করে তুলবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে : ভারত হল দক্ষিণ আফ্রিকার মতোই এক নতুন জাতি। দেশের ৮০ কোটি তরুণ ও যুবশক্তির উৎসাহ, উদ্দীপনা ও কর্মশক্তি সমগ্র দেশের আশা-আকাঙ্খাকে আরও জাগিয়ে তুলেছে। এই যুবশক্তিকে আমরা গড়ে তুলতে চাই ভারতীয় সমাজ ও অর্থনীতির এক চালিকাশক্তি হিসাবে। এই লক্ষ্যে দেশের তরুণ সমাজকে সুদক্ষ কর্মী হিসাবে গড়ে তুলতে এক বিশেষ অভিযান চালিয়েছি আমরা। আমাদের লক্ষ্য হল – আগামী ২০২২ সালের মধ্যে দেশে ৫০ কোটি নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। ভারতের গ্রামগুলিতে এখন উৎসাহ ও উদ্দীপনার এক নতুন জোয়ার এসেছে। শহরগুলিতে এখন পূর্ণ মাত্রায় শুরু হয়ে গেছে এক বিশেষ কর্মকাণ্ড। এই কাজ করতে গিয়ে তাঁরা বেছে নিয়েছেন : আমাদের দুটি দেশেরই রয়েছে সমান আশা-আকাঙ্খা এবং একই ধরণের চ্যালেঞ্জ। দক্ষিণ আফ্রিকার স্বাধীনতার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আন্দোলনে বিশ্বের অন্যান্য দেশের মতো ভারতও এক বিশেষ নেতৃত্বের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল। বর্ণবিদ্বেষের বিরুদ্ধে বিশ্বব্যাপী যে আন্দোলন গড়ে উঠেছিল, তাতেও নেতৃত্ব দিয়েছে ভারত। আমি আগেও যা বলেছি তারই আবার পুনরাবৃত্তি করছি এখানে – আমাদের মৈত্রী তথা বন্ধুত্বের হাত দক্ষিণ আফ্রিকার দিকে বাড়িয়ে দিয়েছি আমরাই প্রথম। আর এইভাবেই আমাদের দু’দেশের সম্পর্কে সূচনা হয়েছে এক নতুন ও গৌরবময় অধ্যায়ের। অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে দেশের যুবসমাজ তথা সমগ্র দেশবাসীর জন্য অনেক কিছুই করতে পারি আমরা। ভৌগোলিক অবস্থানের দিক থেকে ভারত ও আফ্রিকার রয়েছে অফুরন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনা। দুটি দেশেরই রয়েছে তরুণ যুবশক্তি। ভারতে মোট জনসংখ্যার দুই-তৃতীয়াংশের বয়সই ৩৫ বছরের নীচে। দক্ষিণ আফ্রিকা তথা সমগ্র আফ্রিকা মহাদেশের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। উন্নয়নের লক্ষ্যে অভিজ্ঞতা, জ্ঞান ও অংশীদারিত্বকে পরস্পরের সঙ্গে ভাগ করে নিতে হবে আমাদের। আপনাদের এই অভিযানে সামিল হতে ভারত এখন সর্বতোভাবে প্রস্তুত। আমাদের দু’দেশের বাণিজ্যিক ও উন্নয়ন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের কাজ এখন ভালোভাবেই এগিয়ে চলেছে। কিন্তু এই কাজকে আরও আরও গতিশীল করে তুলতে হবে আমাদের। দু’দেশের মিলিত শক্তি গড়ে তুলতে পারে নতুন নতুন শিল্প প্রচেষ্টা, দক্ষতা ও সামাজিক মূল্যবোধ। ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা – দুটি দেশই হল কৌশলগত দিক থেকে পরস্পরের অংশীদার। আমাদের গড়ে তুলতে হবে সহযোগিতা ও অংশীদারিত্বের এমন এক সম্পর্ক, যা মানব প্রচেষ্টার সবকটি ক্ষেত্রেই প্রসার লাভ করবে। আমাদের এই অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এক নতুন শীর্ষে উন্নীত হবে বিভিন্ন ক্ষেত্রে : একই সঙ্গে, আফ্রিকায় আমাদের বন্ধুস্থানীয় সকলের জন্য গড়ে তুলতে পারি নতুন মূল্যবোধও। আমাদের বিভিন্ন শিল্প সংস্থা মিলিতভাবে অর্থনৈতিক সুযোগ ও সুফল এনে দিয়েছে দেশবাসীর কাছে। একই সঙ্গে, তারা পরিবর্তনের সূচনা করতে পারে এই মহাদেশটিতেও। যুবশক্তির ক্ষমতায়ন এবং ক্ষুধা, দারিদ্র্য, অপুষ্টি ও রোগব্যধির বিরুদ্ধে সংগ্রামে মিলিতভাবে কাজ করে যেতে পারি আমরা। শুধুমাত্র আমাদের নিজেদের দেশেই নয়, আফ্রিকা সহ অন্যান্য বিকাশশীল অঞ্চলগুলিতেও মিলিতভাবে কাজ করার শক্তি রয়েছে আমাদের। আমরা বাস করি এমনই এক বিশ্বে, যা বর্তমানে বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ নিয়ে উপস্থিত আমাদের সামনে। জলপথে আক্রমণ তথা সন্ত্রাস এবং এড্‌স তথা ইবোলার বিরুদ্ধে সংগ্রামই হয়ে উঠতে পারে আমাদের দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্বের অগ্রাধিকারের এক ক্ষেত্র। অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একত্রে কাজ করে যাওয়ার সময় জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কেও সংবেদনশীল হওয়ার প্রয়োজন রয়েছে আমাদের। প্যারিসে আমরা সকলে মিলিতভাবে যুগান্তকারী এক ঘটনার সাক্ষী থেকেছি। জলবায়ুর দিক থেকে সুস্থ ও অনুকূল পরিবেশ গড়ে তুলতে নতুন জ্বালানি শক্তি এবং প্রযুক্তিগত সমাধানের ক্ষেত্রে জোরদার করে তুলতে পারি আমাদের এই অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে। নতুন এক ভারত অপেক্ষা করে রয়েছে আপনাদের জন্য। এদেশে আসার ক্ষেত্রে অনেকগুলি বাধাবিপত্তি দূর করতে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি আমরা। ও সি আই এবং পি আই ও কর্মসূচি দুটিকে সংযুক্ত করে এক অভিন্ন কর্মসূচিতে পরিণত করা হয়েছে। এ বছর ফেব্রুয়ারি মাসে দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য আমরা সূচনা করেছি ই-ভিসা কর্মসূচির। এখন আপনারা বাড়িতে বসেই আপনাদের ই-মেল মারফৎ সম্পূর্ণ বিনা খরচে পেয়ে যেতে পারেন ভারতে আসার ভিসা। আমার ভাই ও বোনেরা, ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার সম্পর্ক থেকে অনেক অনেকভাবে লাভবান হতে পারে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা এই দুটি দেশ। ভারতের ঐতিহ্য, আবেগ, অনুভূতি ও মূল্যবোধের অনেক কিছুরই প্রতিফলন দেখা যায় আপনাদের মধ্যে। এই দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্কের এক গুরুত্বপূর্ণ জীবনরেখা হলেন আপনারাই। পরিশেষে, আমি একথাই বলতে চাই যে, আপনাদের সাফল্য, অবদান ও অগ্রগতি আমাদের সকলেরই এক বিশেষ গর্বের বিষয়। আপনাদের সঙ্গে এইভাবেযোগাযোগের সুযোগ হয়েছে আমার। ভিয়েতনামেরহ্যানয়-এ কুয়ান সু বুদ্ধ মন্দিরটি আজ পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার (২০ সেপ্টেম্বর) নতুন দিল্লীর দ্বারকাতে ভারত আন্তর্জাতিক সম্মেলন তথা প্রদর্শনী কেন্দ্রের শিলান্যাস করবেন। এই উপলক্ষে এক সমাবেশেও তিনি ভাষণ দেবেন। দ্বারকা সেক্টর ২৫-এ অত্যাধুনিক এই প্রদর্শনী তথা সম্মেলন কেন্দ্রটিতে বিভিন্ন আর্থিক পরিষেবার পাশাপাশি আতিথেয়তার সমস্তরকম সুযোগ-সুবিধা থাকবে। এই কেন্দ্রটি নির্মাণে আনুমানিক খরচ ধরা হয়েছে ২৫ হাজার ৭০০ কোটি টাকা। একই সঙ্গে বিধ্বংসী বন্যায় নিহতদের পরিজনকে ২ লক্ষ টাকাও গুরুতর আহতদের ৫০,০০০ টাকা করে মাথাপিছু অনুদান প্রদানের কথাও তিনি ঘোষনা করেন। এর ফলে গোটা অঞ্চলের বন্যা নিয়ন্ত্রণব্যবস্থা আরও জোরদার হবে বলেও উভয় দেশের পক্ষে অভিমত ব্যক্ত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার (৭ই জুলাই) জয়পুরে এক জনসভায় ভাষণ দেন। রাজস্থানে ১৩টি শহরাঞ্চলীয় পরিকাঠামো প্রকল্পের শিলান্যাস উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী একটি ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। এরপর, তিনি অডিও-ভিস্যুয়াল ব্যবস্থার মাধ্যমে সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের কিছু সুফলভোগীর অভিজ্ঞতার কথা শোনেন। এক বিশাল সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজস্থান কিভাবে অতিথি ও পরিদর্শনার্থীদের স্বাগত জানাচ্ছে, তা তিনি স্বচক্ষে প্রত্যক্ষ করছেন। এই রাজ্য গত কয়েক বছরে যে অগ্রগতি করেছে তার প্রকৃত চিত্রও আগন্তুকরা দেখতে পাচ্ছেন। তিনি রাজস্থানকে বীরত্বের রাজ্য হিসাবে বর্ণনা করেন। প্রকৃতির সঙ্গে সহাবস্থানে বসবাসই হোক, বা দেশের সুরক্ষা – সব ব্যাপারেই রাজস্থান দিশা দেখিয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। কেন্দ্রীয় সরকার ও রাজ্য সরকার রাজস্থানের সার্বিক অগ্রগতিতে একযোগে কাজ করছে। তিনি বলেন, অডিও-ভিস্যুয়াল ব্যবস্থার মাধ্যমে বিভিন্ন প্রকল্পের সুফলভোগীদের অভিজ্ঞতার কথা শোনার সময় তাঁদের মধ্যে যে আনন্দ ও খুশি প্রকাশ পেয়েছে, তা এই সমাবেশে উপস্থিত প্রত্যেকেই লক্ষ্য করছেন। কৃষকদের কল্যাণে কেন্দ্রীয় সরকার কিভাবে কাজ করে চলেছে প্রধানমন্ত্রী তার বিশদ ব্যাখ্যা দেন। খরিফ মরশুমে বিভিন্ন খাদ্যশস্যের জন্য ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির যে কথা ঘোষণা করা হয়েছে, তিনি সে কথাও উল্লেখ করেন। রাজস্থানে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্প যেমন – ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’, ‘জন ধন যোজনা’ ও ‘সৌভাগ্য যোজনা’য় অগ্রগতির কথাও প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে জাতীয়সম্পদগুলি যাতে জাতির চাহিদা ও স্বার্থ পূরণের কাজে ব্যবহার করা যায় তা নিশ্চিতকরতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রতিযোগিতামূলক নিলামের মাধ্যমে এই উদ্বৃত্ত জমি বিক্রির ব্যবস্থা করাহবে এবং যে আয় হবে তা ঐ সংস্থাগুলির দায় মেটানোর কাজে ব্যবহৃত হবে। রাষ্ট্রায়ত্তএই সংস্থাগুলির স্বেচ্ছাবসর প্রকল্প ও ভিএসএস কর্মসূচি রূপায়ণেরও ব্যবস্থা করা হবেএর সাহায্যে। উদ্বৃত্ত জমি বিক্রি করে দেওয়ার পর অবশিষ্ট জমি কাজে লাগানো হবেকেন্দ্রীয় বিনিয়োগ ও সরকারি সম্পদ পরিচালন দপ্তর এবং কেন্দ্রীয় সরকারি শিল্পোদ্যোগদপ্তরের নীতি-নির্দেশিকা অনুযায়ী। বকেয়া দায়ভার মেটানোর পর আইডিপিএল এবং আরডিপিএল-কে বন্ধ করে দেওয়ারউদ্যোগ নেওয়া হবে। তবে, এইচএএল এবং বিসিপিএল-এর ক্ষেত্রে কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণ করাহবে সরকারের পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী প্রবীন অধ্যাপক শ্রী নারায়ণভাই ভান্ডারির প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী এক শোকবার্তায় বলেছেন, “আমেদাবাদের প্রবীন অধ্যাপক ও আমার ঘনিষ্ঠজন নারায়ণভাই ভান্ডারির প্রয়াণের বিষয়টি জেনে অত্যন্ত দুঃখবোধ করছি। শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত নারায়ণভাই তাঁর ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে সবসময় যুক্ত থাকতেন। তাঁর অনন্যকরণীয় ব্যক্তিত্ব সর্বকালেই স্মরণে থাকবে”। আমার মন্ত্রিমণ্ডলের সহযোগী কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্সপ্রতিমন্ত্রী শ্রী পিপি চৌধুরী মহোদয়, ইন্সটিটিউট অফ কোম্পানি সেক্রেটারিস অফইন্ডিয়া’র অধ্যক্ষ, নবীন অধ্যক্ষ শ্যাম আগরওয়াল মহোদয়, এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত সকল মাননীয় ব্যক্তিবর্গ আরপ্রযুক্তির মাধ্যমে দেশের নানা স্থানে আপনাদের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে বসে যাঁরা এইঅনুষ্ঠান দেখছেন, আমার বক্তব্য শুনছেন, আজ আইসিএসআই ৫০ বছরে পদার্পণ করল। এই উপলক্ষে এইপ্রতিষ্ঠানের সঙ্গে যুক্ত সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই। তেমনই আপনাদের প্রতিষ্ঠানও ‘সত্যম বদ্‌, ধর্মং চর্‌’-এরশিক্ষা দিয়ে ছাত্রদের ভবিষ্যতে সঠিক লক্ষ্যে চলার পথ দেখান। দেশে সততা এবংস্বচ্ছতাকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দেওয়ার ক্ষেত্রে আপনাদের প্রতিষ্ঠানের অত্যন্তগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বন্ধুগণ, আচার্য চাণক্য বলেছিলেন, বন্ধুগণ, একথা কোনও সংস্থার জন্য যেমন প্রযোজ্য,তেমনই দেশের জন্যও ১০০ শতাংশ প্রযোজ্য। আমাদের দেশেও হাতে গোনা কিছু মানুষ আছেন,যারা দেশের মান-সম্মান এবং আমাদের সৎ সামাজিক মর্যাদাকে দুর্বল করে দেওয়ার কাজকরেন। এদেরকে আমাদের ব্যবস্থা এবং প্রতিষ্ঠানগুলি থেকে সরিয়ে দেওয়ার জন্য বর্তমানসরকার প্রথম দিন থেকেই স্বচ্ছতা অভিযান শুরু করেছে। বেশ কিছু নতুন দেশের সঙ্গে কর চুক্তির মাধ্যমেপুরনো কর চুক্তিতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। তাদের সঙ্গে বসে নতুন পদ্ধতি খুঁজে বের করাহয়েছে। ‘ইনসলভেন্সি’ এবং ‘ব্যাঙ্করাপ্টসি কোড’ প্রণয়ন করা হয়েছে। ২৮ বছর ধরেস্থগিত বেনামী সম্পত্তি আইন চালু করা হয়েছে। অনেক বছর ধরে ঝুলে থাকা জিএসটি, আমিযাকে ‘গুড অ্যান্ড সিম্পল ট্যাক্স’ বলি, সর্বসম্মতিক্রমে তা চালু করা হয়েছে। তারপরএই সরকার বিমুদ্রাকরণের সিদ্ধান্ত নেওয়ার সাহস দেখিয়েছে। ভাই ও বোনেরা, এই সরকার দেশে প্রাতিষ্ঠানিক সততাকেশক্তিশালী করার জন্য কাজ করে যাচ্ছে। বর্তমান সরকারের কঠিন পরিশ্রমের ফলে আজ দেশেঅর্থ ব্যবস্থায় নগদ লেনদেন কমেছে। দেশের অর্থব্যবস্থায় নতুন সততার যুগ শুরু না হলে কি এটা সম্ভব হ’ত? অর্জুনের সারথীযেমন ছিলেন শ্রীকৃষ্ণ, তেমনই কর্ণের সারথী ছিলেন শল্য। কিন্তু কৃষ্ণ যেমনঅর্জুন’কে যুদ্ধের জন্য উদ্বুদ্ধ করেছিলেন। শল্যের চরিত্র ছিল তার বিপরীত। তিনিকর্ণকে বলতেন, অমুকের তুলনায় আপনার রথের ঘোড়া দুর্বল, তমুকের সঙ্গে যুদ্ধ করে কোনওলাভ নেই, ইত্যাদি। আমার মতে, এই শল্য কোনও ব্যক্তি নয়, একটি প্রতীক। আজকের যুগেওএমন মানুষেরা আছেন, যাঁরা প্রতিনিয়ত আপনাকে নিরুৎসাহিত করবেন, আরে কেন করবেন,কিচ্ছু হবে না! যে কোনও পরিসংখ্যান তাঁদের অনুকূল হলে তাঁরা সেই প্রতিষ্ঠানকেভালোবাসেন, সেই প্রক্রিয়াকেও পছন্দ করেন। কিন্তু যখনই এই পরিসংখ্যান তাঁদেরকল্পনার প্রতিকূল হয়, তখন তাঁরা বলতে শুরু করেন যে, এই প্রতিষ্ঠান ভালো নয়, এইপ্রক্রিয়া ঠিক নয়, এই নেতৃত্ব অপদার্থ – এরকমই সব অভিযোগ তোলেন। বন্ধুগণ, ২০১৪ সালের আগের দু’বছর অর্থাৎ ২০১২-১৩এবং ২০১৩-১৪’র দিকে যদি তাকান, তা হলে গড় বৃদ্ধি ছিল ৬ শতাংশের কাছাকাছি। এখন কেউবলতে পারেন যে, আপনারা এই দু’বছরই কেন ধরলেন। কারণ, শল্যবৃত্তি এমনই ছিদ্রান্বেষী। বন্ধুগণ, আমি অর্থনীতিবিদ নই, কখনও অর্থনীতিবিদহওয়ার দাবিও করিনি। কিন্তু আজ যখন অর্থনীতি নিয়ে এত আলোচনা হচ্ছে, আমি আপনাদেরফ্ল্যাশ ব্যাকে নিয়ে যেতে চাই। আপনাদের নিশ্চয়ই মনে আছে, আমাদের দেশে সেই সময় জিডিপি বৃদ্ধির থেকে বেশি মুদ্রাস্ফীতিনিয়ে আলোচনা হ’ত, ফিসকাল ডেফিসিট এবং কারেন্ট অ্যাকাউন্ট ডেফিসিটের বৃদ্ধি নিয়েবেশি আলোচনা হ’ত। টাকার তুলনায় ডলার দাম বৃদ্ধি হলে খবরের কাগজেশিরোনাম লেখা হ’ত, এমনকি সুদের হারে বৃদ্ধি হলেও তা নিয়ে আলোচনা হ’ত। দেশেরউন্নয়নকে বিপরীত লক্ষ্যে নিয়ে যাওয়ার সকল পরিসংখ্যান নিয়ে আলোচনা করতে তাঁরা পছন্দকরতেন। এখন যখন সেই পরিসংখ্যানে উন্নতি হয়েছে, দেশেরউন্নয়ন সঠিক লক্ষ্যে এগোচ্ছে, তখন সেই মানুষেরা চোখে ঠুলি পরেছেন। কোথায় ১০ আর কোথায় ২.৫! চলতি খাতে ঘাটতি ৪ শতাংশ থেকে কমে ১শতাংশের কাছাকাছি চলে এসেছে। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন তো? এই পরিসংখ্যান যখন শুধরাচ্ছে, কেন্দ্রীয় সরকারনিজের রাজকোষ ঘাটতি বিগত সরকারের ৪.৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৩.৫ শতাংশে নিয়ে আসতেপেরেছে। আজ ভারতে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা রেকর্ড পরিমাণবিনিয়োগ করতে এগিয়ে এসেছেন। বন্ধুগণ, একথা সত্যি যে, গত তিন বছর ধরে ৭.৫ শতাংশগড় বৃদ্ধির পর এ বছর এপ্রিল-জুন এই তিন মাসে জিডিপি’র বিকাশ হ্রাস পেয়েছে। আমরাএকথা অস্বীকার করছি না। কিন্তু আমরা দেশে আর্থিক স্থৈর্য রক্ষায় দৃঢ়সংকল্পবদ্ধ। বিনিয়োগ বৃদ্ধি এবং আর্থিক উন্নয়নে গতি বৃদ্ধির জন্য আমরা প্রয়োজনীয় সবপদক্ষেপ নেব। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে চাই যে, সরকার যেসবপদক্ষেপ নিচ্ছে, তা আগামী বছরগুলিতে দেশের উন্নয়নে জোয়ার আনবে। আমি আরেকবার আশ্বস্ত করতে চাই যে, এরকমকরতে দেওয়া হবে না। কারণ, আগে সরকার, সরকারের নিয়ম, মানুষের আচরণ এরকম ছিল যে,তাঁরা হয়তো এরকম পথ অবলম্বন করতে বাধ্য হয়েছিলেন। আর সেজন্য আমাদের সরকারের ইচ্ছে হ’ল – যত মানুষ সততার সঙ্গে মূলস্রোতেফিরে আসতে চাইবেন, তাঁদেরকে স্বাগত জানাব। একইভাবে আজ আমি জিএসটি সম্পর্কে বলতে চাই। তিন মাস পর আজ কি হচ্ছে আর কি হচ্ছে না, সব আমরা দেখছি। প্রতিটি বিষয়েরপুঙ্খানুপুঙ্খ ফিডব্যাক নেওয়া হয়েছে। বন্ধুগণ, বর্তমান আর্থিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনাকরতে গিয়ে আমি কিছু তথ্য আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। এই তথ্যগুলির মানে কি দাঁড়ায়,তা নির্ণয় করার দায়িত্বও আমি আপনাদেরকে দিচ্ছি, আমার দেশবাসীকে দিচ্ছি। বন্ধুগণ, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, যেদিন আপনি নিজেরপ্রথম গাড়ি কিনেছিলেন, আমার মনে হয় না, আপনারা কেউ বাধ্য হয়ে কিনেছিলেন। এটাই আমাদের সমাজেরমূল ভাবনা। এসব সংকেত শহুরে এলাকার চাহিদা বৃদ্ধিকেসূচিত করে। এখন যদি গ্রামীণ চাহিদার সঙ্গে যুক্ত হন, সূচকগুলির দিকে তাকান, তা হলেদেখবেন, বিগত কয়েক মাসে ট্র্যাক্টরের বিক্রিতে ৩৪ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি হয়েছে। এফএমসিজি’র ক্ষেত্রেও চাহিদা বৃদ্ধির ঝোঁক এইসেপ্টেম্বরে দেখা গেছে। সম্প্রতি প্রাপ্ত পরিসংখ্যান অনুযায়ীকয়লা, বিদ্যুৎ, ইস্পাত এবং প্রাকৃতিক গ্যাসের উৎপাদনে খুব ভালো বৃদ্ধি হয়েছে। বন্ধুগণ, ব্যাঙ্কগুলিতে ব্যক্তিগত ঋণদান বৃদ্ধিপেয়েছে। হাউসিং ফিন্যান্স কোম্পানি এবং নন্‌-ব্যাঙ্কিং ফিন্যান্স কোম্পানিগুলিপ্রদত্ত ঋণের হারও বৃদ্ধি পেয়েছে। শুধু তাই নয়, ক্যাপিটাল মার্কেটে এখন মিউচ্যুয়ালফান্ড এবং বিমা ক্ষেত্রে অধিক বিনিয়োগ হচ্ছে। কোম্পানিগুলি আইপিও-গুলির মাধ্যমে এ বছর প্রথম ছয়মাসেই ২৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থের সংস্থান করেছে। গত বছর সারা বছরে এই অঙ্ক২৯ হাজার কোটিতে পৌঁছেছিল। নন্‌-ফিনান্সিয়াল এনটিটি-গুলির মধ্যে কর্পোরেট বন্ড এবংপ্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে মাত্র চার মাসেই ৪৫ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ করাহয়েছে। এই সমস্ত পরিসংখ্যান দেশে ফাইনান্সিং-এর ব্রডবেস-কে সূচিত করে। অর্থাৎ ভারতে এখন ফাইনান্সিং শুধু মাত্র ব্যাঙ্ক ঋণ পর্যন্তসীমিত থাকেনি। বর্তমান সরকার সময় এবং ব্যবস্থা উভয়ের মাধ্যমে যথাযথ প্রয়োগেলাগাতার জোর দিয়ে যাচ্ছে। বিগত সরকারের শেষ তিন বছরের কাজের গতি আর বর্তমানসরকারের তিন বছরের কাজের গতিতে যে পার্থক্য রয়েছে, তা আপনারা স্পষ্টভাবে দেখতেপাবেন। সড়ক নির্মাণের ক্ষেত্রে বিগত সরকারের শেষ তিন বছরে৮০ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মিত হয়েছিল। বর্তমান সরকার বিগত তিন বছরে ১লক্ষ ২০ হাজার কিলোমিটার গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ করেছে। অর্থাৎ ৫০ শতাংশেরও বেশিগ্রামীণ সড়ক নির্মিত হয়েছে। বিগত সরকার শেষ তিন বছরে ১৫ হাজার কিলোমিটার জাতীয় সড়কনির্মাণ করেছে। বর্তমান সরকার তিন বছরে ৩৪ হাজার কিলোমিটার থেকেও বেশি জাতীয় সড়কনির্মাণ করেছে। অর্থাৎ ইতিমধ্যেই সরকারদ্বিগুণেরও বেশি বিনিয়োগ করেছে। আপনারা সকলেই জানেন যে, কতটা প্রশাসনিক এবং আর্থিকউদ্যোগ নিতে হয়। এই পরিসংখ্যান দেখায় যে, কিভাবে সরকার নীতির অচলাবস্থা থেকে উঠেএসে নীতি-নির্ধারক এবং নীতি রূপায়ণকারীর ভূমিকা পালন করে দেখিয়েছে। অর্থাৎ, এখানেও ৭৫ শতাংশের বেশি। বর্তমান সরকার বিগত তিন বছরে২২ হাজার মেগাওয়াটেরও বেশি পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের নতুন ক্ষমতা গ্রিডপাওয়ারের সঙ্গে যুক্ত করতে পেরেছে। অর্থাৎ, এক্ষেত্রেও সরকারের সাফল্য প্রায়দ্বিগুণ। বিগত সরকার শেষ তিন বছরে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে ৪ হাজার কোটিটাকা বিনিয়োগ করেছে। বর্তমান সরকার গত তিন বছরে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রেপরিকাঠামো উন্নয়নে ১০ হাজার ৬০০ কোটি টাকারও বেশি খরচ করেছে। বিগত সরকারের তুলনায় জাহাজ শিল্পে উন্নয়নেরক্ষেত্রে কার্গো হ্যান্ডলিং-এর বৃদ্ধির হার ঋণাত্মক মাত্রা থেকে টেনে তুলে বর্তমানসরকার তিন বছরে ১১ শতাংশেরও বেশি বৃদ্ধি করেছে। বন্ধুগণ, দেশের রেল, সড়ক ও বিদ্যুতের মতোপ্রাকৃতিক পরিকাঠামোর পাশাপাশি সরকার সামাজিক পরিকাঠামো শক্তিশালী করার ক্ষেত্রেওগুরুত্ব দিচ্ছে। আমরা সুলভ গৃহ নির্মাণ ক্ষেত্রে এমন সব নীতিগত সিদ্ধান্ত নিয়েছি,অর্থনৈতিক সংস্কার এনেছি, যা এক্ষেত্রে অভূতপূর্ব। বন্ধুগণ, বিগত সরকার তার প্রথম তিন বছরে মাত্র ১৫হাজার কোটি টাকার প্রকল্প মঞ্জুর করেছিল। বর্তমান সরকার তার প্রথম তিন বছরে ১ লক্ষ৫৩ হাজার কোটি টাকার প্রকল্প মঞ্জুর করেছে। আর এই প্রকল্পগুলি আমাদের গরিব এবংমধ্যবিত্তদের মাথার ওপর ছাদ সুনিশ্চিত করার প্রতিশ্রুতি পূরণে সাহায্য করেছে। বন্ধুগণ, দেশে শুরু হওয়া চতুর্থ দফার উন্নয়নযজ্ঞেঅধিক বিনিময়ের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সেজন্য ভারত সরকার অধিক বিদেশি পুঁজি বিনিয়োগেরপথ প্রশস্ত করার ক্ষেত্রে জোর দিয়েছে। আমার মনে হয় আপনাদের অনেকেরই হয়তো মনে আছে, যখনদেশে বিমা ক্ষেত্রে সংস্কারের প্রস্তাব পেশ করা হয়েছিল, তখন খবরের কাগজে শিরোনামহ’ত যে, এমনটি হলে অনেক বড় অর্থনৈতিক সংস্কার হবে। কিন্তু বিগত সরকার এই সংস্কারেরকাজ করে যায়নি। কিন্তু আপনাদের আমি বলছি, বিগত তিন বছরে ২১টি ক্ষেত্রে আমরা এরকম ৮৭টিছোট-বড় সংস্কারের কাজ সাফল্যের সঙ্গে করেছি। নির্মাণ ক্ষেত্র, প্রতিরক্ষা ক্ষেত্র,আর্থিক পরিষেবা ক্ষেত্র, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্র ইত্যাদি অনেক ক্ষেত্রেবিনিয়োগের নিয়মে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে। দেশে আর্থিক উদারীকরণের পর থেকে এখন পর্যন্ত ভারতেযে পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ হয়েছ, তার সঙ্গে বিগত তিন বছরের তুলনা করলে বুঝতে পারবেনযে, আমাদের সরকার যে সংস্কার শুরু করেছে তার কেমন সুফল পাওয়া যাচ্ছে। বন্ধুগণ, সরকার আপনাদের পরিশ্রম করে রোজগার করাপ্রতিটি পয়সার মূল্য বোঝে। বন্ধুগণ, বর্তমান সরকারের ধারাবাহিক প্রচেষ্টারফলে এখন মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবারের অর্থ কিভাবে সাশ্রয় হচ্ছে, তার একটিউদাহরণ আমি দেব – বিগত সরকারের সময় একটি এলইডি বাল্বের দাম ছিল ৩৫০ টাকা। বর্তমানসরকার ‘উজালা যোজনা’ অভিযান শুরু করার পর এখন তার দাম কমে হয়েছে ৪০ থেকে ৪৫ টাকা।আপনারা বলুন তো মধ্যবিত্ত এবং নিম্নবিত্তের খরচ কমল কি না? বন্ধুগণ, ইতিমধ্যেই দেশে ২৬ কোটিরও বেশি এলইডি বাল্‌ববিতরণ করা হয়েছে। ফলে, এক বছরে মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্তপরিবারের আনুমানিক ১৪ হাজার কোটি টাকা সাশ্রয় হয়েছে। ফলে,দেশের অনেক শহরের পৌরসভা, নগরপালিকা এবং মহানগর পালিকাগুলির আর্থিক সাশ্রয় হচ্ছে।আমরা যদি কেবল টায়ার-২ শহরগুলিকে দেখি, তা হলে তাদের প্রত্যেকের বছরে প্রায় ১০থেকে ১৫ কোটি টাকা সাশ্রয় হচ্ছে। এই উদ্বৃত্ত টাকা তারা নগরবাসীর পরিষেবা উন্নয়নেকাজে লাগাতে পারছে। আমাদের দেশে কখনও মধ্যবিত্তদের গৃহ নির্মাণের ক্ষেত্রেসুদের হার কমানোর কথা ভাবা হয়নি। এই প্রথম কেন্দ্রীয় সরকার মধ্যবিত্তদের নিজস্বগৃহ নির্মাণে সুদের হার হ্রাস করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। দালালদের অনেক কষ্ট হয়। আমরা যখন শুরুতেপ্রত্যক্ষ নগদ হস্তান্তরের মাধ্যমে টাকা পাঠাতাম, তখন অনেক ভুতুড়ে প্রাপকের লাভহ’ত। এখন সেই ভুতের সংখ্যা অনেক কমে গেছে। তা হলে তারা মোদীকে কেন পছন্দ করবে মশাই? আরসেজন্য সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নেই আমরা জোর দিচ্ছি। আমি দেশের মানুষকে বিনীতভাবেএকটি কথা বলতে চাই যে, আজকের লাভের জন্য আমি দেশের ভবিষ্যৎ নিয়ে খেলা করতে পারিনা। আর সেজন্য বর্তমান সরকার নবীন প্রজন্মেরসেই মানুষদের দিকে যথাসম্ভব সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে, যাঁরা নিজের চেষ্টায়কিছু করতে দেখাতে চান। ইতিমধ্যেই মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে কোনও রকমগ্যারান্টি ছাড়া ৯ কোটিরও বেশি নবীন প্রজন্মের মানুষদের ৩ লক্ষ ৭৫ হাজার কোটিটাকারও বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে। এই ৯ কোটির মধ্যে ২ কোটি ৬৩ লক্ষ যুবক প্রথমবারমুদ্রা যোজনার মাধ্যমে ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেয়েছেন। বর্তমান সরকার দক্ষ ভারত মিশন, স্ট্যান্ড আপইন্ডিয়া, স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’র মতো প্রকল্পগুলির মাধ্যমে স্বরোজগারকে উৎসাহ প্রদানকরছে। যথাসম্ভব বেশি মানুষকে প্রথাবদ্ধ ক্ষেত্রে কর্মসংস্থান সুনিশ্চিত করতেকোম্পানিগুলিকে আর্থিক সহায়তা দেওয়া হচ্ছে। গত তিন বছরে এই সংখ্যাবৃদ্ধি পেয়ে ৪ কোটি ৮০ লক্ষে পৌঁছে গেছে। যাঁরা শল্যবৃত্তি করেন, তাঁরা এটাও ভুলেযান যে, কর্মসংস্থান না হলে এই সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়া কোনও মতেই সম্ভব ছিল না। বন্ধুগণ, আমরা গরিব, নিম্নবিত্ত ও মধ্যবিত্তেরজীবনে উৎকর্ষগত পরিবর্তন আনার লক্ষ্যে সকল প্রকল্পের খসড়া রচনা করেছি, সেগুলিরবাস্তবায়নে আমরা সুফল পাচ্ছি। প্রায় ১৫ কোটি দরিদ্রমানুষকে সরকার বিমা প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসতে পেরেছে। আর সম্প্রতি দেশের প্রত্যেকগরিবকে নিঃশুল্ক বিদ্যুৎ সংযোগ প্রদানের উদ্দেশ্যে ‘সৌভাগ্য যোজনা’ চালু করাহয়েছে। বর্তমান সরকারের প্রতিটি প্রকল্প গরিব মানুষেরক্ষমতায়নে সুফলদায়ক। এখন সময়ের চাহিদা হ’ল আপনারা একটি নতুন ব্যবসাসংস্কৃতি গড়ে তুলতেও সক্রিয় ভূমিকা পালন করবেন। জিএসটি চালু হওয়ার পর নতুনভাবে ১৯ লক্ষ নাগরিকঅপ্রত্যক্ষ কর-এর আওতায় এসেছেন। তাঁদের জন্য একটা নতুন রোজগারের ক্ষেত্র খুলে যাবে।আর অতি সহজেই নিজের এলাকায় বসে তাঁরা রোজগার করতে পারবেন। যদি সুসংবদ্ধভাবে আমরাএই কাজ করি, তা হলে দেখবেন ঐ ১ লক্ষ যুবক-যুবতীর কর্মসংস্থানের পর আরও অনেককেপ্রশিক্ষণ দিতে হতে পারে। বন্ধুগণ, আগামী ২০২২ সালে দেশ স্বাধীনতার ৭৫ বছরপূর্তি পালন করবে। আপনাদের প্রতিষ্ঠান কি শপথ নিতে পারে, আমি চাই নাযে আজই আপনারা ‘হ্যাঁ’ করে দিন; কিন্তু আপনারা ভাবুন, আপনারা কি ২০২২ সালের জন্যকিছু সংকল্প গ্রহণ করতে পারেন? আপনারা কি ২০২২ এর মধ্যে দেশে একটি উচ্চমাত্রায় করমান্যতাকারী সমাজ গড়ে তোলার চেষ্টা করবেন? আপনারা কি সুনিশ্চিত করতে পারবেন যে, ২০২২ সালেরমধ্যে দেশে একটিও ভুয়ো কোম্পানি থাকবে না? আপনারা কি সুনিশ্চিত করতে পারবেন যে,২০২২ সালের মধ্যে দেশের প্রত্যেক কোম্পানি সততার সঙ্গে যথাযথ কর প্রদান করবে?হাততালির শব্দ কমে গেছে, আমি জানি, এটা কঠিন কাজ! আমি আপনাদের এই সুবর্ণ জয়ন্তীবর্ষের জন্য অনেকঅনেক শুভেচ্ছা জানাই। আর দেশবাসীকেও নিশ্চিত করতে চাই যে, বেশ কিছুদিন ধরে আর্থিকবিষয়ে আমাদের যে সমালোচনা হচ্ছে, সেগুলিকে আমরা খারাপভাবে নিই নি। আমাকে এবং আমারসঙ্গে আগত প্রতিনিধিদের সাদর ও আন্তরিক স্বাগত সম্ভাষণের জন্য ভিয়েতনামসরকার এবং তার নেতৃবৃন্দের আমি বিশেষ প্রশংসা করি। আমাদের এই সাংস্কৃতিক বন্ধনের প্রতিফলন ঘটেছেনানাভাবে। এর মধ্যে যা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ তা হল বৌদ্ধ ধর্মের সঙ্গে হিন্দুচাম সভ্যতার স্মারকগুলির সংযোগ ও মিলন । গত চার দশক ধরে ভিয়েতনামের সঙ্গেআমাদের বহুমুখী পারস্পরিক সহযোগিতার সাফল্য এর সবচেয়ে বড় উদাহরণ। কু লং ডেল্টারধান গবেষণা প্রতিষ্ঠানটি আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার একটি গুরুত্বপূর্ণ নজির । কৃষি বিশেষজ্ঞদের এ দেশে পাঠিয়ে এবং ভারতে প্রয়োজনীয়প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করে মেকং ডেল্টায় এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তুলতে বিশেষভাবেসাহায্য করেছি আমরা। বর্তমানে ভিয়েতনাম হল বিশ্বের বৃহত্তম চাল রপ্তানিকারক একটিদেশ। এক প্রধান ধান উৎপাদক এবং চাল রপ্তানিকারক দেশ হিসেবে ভিয়েতনামের এই গড়ে ওঠারপথে সহযোগী হতে পেরে আমরা বিশেষভাবে আনন্দিত। পরস্পরের অংশীদারহিসেবে উদ্ভূত আঞ্চলিক চ্যালেঞ্জগুলির যৌথ মোকাবিলায় এবং নতুন নতুন সুযোগগুলিরসদ্ব্যবহারেও এই সম্পর্ককে কাজে লাগাতে হবে আমাদের । আর মাত্র কয়েক মাস পরেই আমাদেরএই স্মারক সাফল্যগুলি যৌথভাবে উদযাপন করব আমরা। ভারত ও ভিয়েতনামেরবলিষ্ঠ অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আমাদের দু’দেশের জনসাধারণ তথা বৃহত্তর আঞ্চলিকক্ষেত্রে এই শান্তি, সমৃদ্ধি, বিকাশ ও স্থিতিশীলতার পরিবেশ গড়ে তোলার কাজেনেতৃত্বের ভূমিকা পালন করবে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। ভারতের ‘পূবে তাকাও’ নীতির একটিশক্তিশালী স্তম্ভই হল ভিয়েতনাম। পারস্পরিক আস্থা, সমঝোতা এবং আঞ্চলিক তথাআন্তর্জাতিক বিষয়ে আমাদের সমান দৃষ্টিভঙ্গির ওপরই গড়ে উঠেছে আমাদের এই দ্বিপাক্ষিকসম্পর্ক। মাননীয়প্রধানমন্ত্রী, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, আমি সানন্দে আপনাদেরআহ্বান জানাই, আসুন আমার মিলিতভাবে : প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে অখিল ভারতীয় আয়ুর্বেদসংস্থান জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ধনতেরস জয়ন্তীতে আয়ুর্বেদদিবস উপলক্ষে সমবেত সকলকে শুভেচ্ছা জানান। তিনি আয়ুষ মন্ত্রককে অখিল ভারতীয় আয়ুর্বেদসংস্থান প্রতিষ্ঠার জন্য প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, একটি জাতিতাঁদের ইতিহাস ও ঐতিহ্যকে মূল্য না দিতে পারলে অগ্রগতি করতে পারে না। যেসব দেশতাদের ঐতিহ্যকে অবহেলা করে, তারা তাদের পরচিতি হারিয়ে ফেলবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ভারত যখন স্বাধীন ছিল না, তখন যোগা ও আয়ুর্বেদেরমতো নিজস্ব জ্ঞান ও ঐতিহ্যকে খাটো করে দেখা হ’ত। এমনকি, এই দুই ঐতিহ্যের ওপরভারতীয়দের বিশ্বাস যাতে কমে যায়, তার চেষ্টাও করা হ’ত বলে তিনি মন্তব্য করেন। শ্রী মোদী বলেন, আয়ুর্বেদ দিবস বা যোগদিবসের অনুষ্ঠানে মানুষ যেভাবে যোগ দেন, তার মধ্য দিয়েই আমাদের ঐতিহ্যের গর্বপ্রতিফলিত হয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ুর্বেদ কেবলমাত্র কোনও চিকিৎসা ব্যবস্থা নয়, এরমধ্যে জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশের স্বাস্থ্যের বিষয়টিও জড়িয়ে আছে। এই কারণেই সরকারআয়ুর্বেদ, যোগা এবং অন্যান্য আয়ুষ ব্যবস্থাকে জনস্বাস্থ্য পরিষেবার ব্যবস্থারসঙ্গে যুক্ত করার ওপর জোর দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার দেশের প্রত্যেক জেলায় একটি করে আয়ুর্বেদহাসপাতাল প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে কাজ করছে। তিনি বলেন, বিগত তিন বছরে ইতিমধ্যেই ৬৫টিরওবেশি আয়ুষ হাসপাতাল স্থাপন করা হয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, সারা বিশ্ব জুড়ে লতাগুল্ম এবং ঔষধি গাছগাছড়া আয়েরগুরুত্বপূর্ণ উৎস হয়ে উঠতে পারে এবং ভারত’কে এই বিষয়টিকে কাজে লাগানোর কথা ভাবাউচিৎ। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থায় ১০০ শতাংশপ্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ অনুমোদন করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, সরকার দরিদ্র মানুষের জন্য সুলভে স্বাস্থ্য পরিষেবাপ্রদানের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে। তিনি বলেন, সাবধানতামূলক স্বাস্থ্য পরিষেবাএবং সহজে সুলভ চিকিৎসা পরিষেবা ব্যবস্থা করার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। স্বচ্ছতা অথবাপরিচ্ছন্নতা হচ্ছে সাবধানতামূলক স্বাস্থ্য পরিষেবার সবচেয়ে সহজ ব্যবস্থা। তিনিবলেন, কেন্দ্রীয় সরকার গত তিন বছরে ৫ কোটি শৌচাগার নির্মাণের ব্যবস্থা করেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের মানুষ যাতে আরও ভালো স্বাস্থ্য পরিষেবার সুযোগপান, তার জন্য নতুন এইম্‌স স্থাপন করা হচ্ছে। জাতীয় কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন ব্যাঙ্ক আইন, ১৯৮১’র সংশোধন প্রস্তাবে বুধবারঅনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এদিন অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠকটি। সংশোধন প্রস্তাবে সরকারকে ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে ন্যাবার্ডের অনুমোদিত ৫ হাজারকোটি টাকার অনুমোদিত তহবিলকে ৩০ হাজার কোটি টাকায় উন্নীত করা এবং প্রয়োজনবোধেভারতীয় শীর্ষ ব্যাঙ্কের সঙ্গে আলোচনা ও পরামর্শক্রমে তা ৩০ হাজার কোটি টাকারও বেশিমাত্রায় নিয়ে যাওয়ার। “মুম্বাইয়ের অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় আমি মর্মাহত। এই মর্মান্তিক পরিস্থিতিতেশোক সন্তপ্ত পরিবারগুলির মতোই আমিও সমান উদ্বিগ্ন। বিশ্ব জৈব জ্বালানি দিবস উপলক্ষে আগামীকাল (১০ আগস্ট, ২০১৮) নতুন দিল্লির বিজ্ঞান ভবনে একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি কৃষক, বিজ্ঞানী, উদ্যোগপতি, ছাত্রছাত্রী, সরকারি আধিকারিক এবং বিধায়কদের একটি সমাবেশে ভাষণ দেবেন। প্রসঙ্গত, অশোধিত তেলের ওপর নির্ভর করার প্রবণতা অনেকটাই কমাতে পারে জৈব জ্বালানি ব্যবহার। কেন্দ্রীয় সরকার উদ্যোগ নেওয়ার ফলে পেট্রোলের সঙ্গে ইথানল মেশানোর প্রক্রিয়া ২০১৩-১৪-র লিটার প্রতি ৩৮ কোটি থেকে বেড়ে ২০১৭-১৮-তে লিটার প্রতি ১৪১ কোটি হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী একদিনের উত্তরপ্রদেশ সফরে গিয়ে রবিবার (১৬ই ডিসেম্বর) রায়বেরিলিতে আধুনিক রেল কামরা নির্মাণ কারখানা পরিদর্শন করেন। এক জনসভায় তিনি ৯০০তম রেল কামরা এবং হামসফর ট্রেনের সূচনা করেন। রায়বেরিলিতে তিনি একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ, উদ্বোধন তথা শিলান্যাস করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যে প্রকল্পগুলি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ, উদ্বোধন বা শিলান্যাস করা হয়েছে, সেগুলিতে বিনিয়োগের পরিমাণ প্রায় এক হাজার কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রায়বেরিলির আধুনিক রেল কামরা নির্মাণ কারখানাটি যুবকদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করেছে এবং এই কারখানাটি রায়বেরিলিকে রেল কামরা নির্মাণের দিক থেকে এক আন্তর্জাতিক কেন্দ্রে পরিণত করবে। ১৯৭১-এ আজকের দিনটির কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় সেনাবাহিনী সেই সমস্ত শক্তিগুলিকে পরাজিত করেছিল যারা সন্ত্রাস, বর্বরতা এবং বেপরোয়া মনোভাবের প্রতীক। তিনি আরও বলেন, যারা মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে থাকেন তারা প্রতিরক্ষা মন্ত্রক, বিমানবাহিনী এমনকি, বিদেশি সরকারের নামেও কুৎসা ও কলঙ্ক প্রচার করছেন। মিথ্যার প্রতি যাদের আসক্তি রয়েছে তাদের কেবল বিশ্বাস দিয়ে পরাজিত করা সম্ভব। দেশের নিরাপত্তা এবং সশস্ত্র বাহিনীগুলির প্রয়োজনীয়তার ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বদাই দেশের স্বার্থের কথা বিবেচনায় রাখে। কৃষকদের আয় বাড়াতে কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই ২২টি ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বাড়িয়েছে বলেও তিনি জানান। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে কৃষক সমাজকে অতিরিক্ত ৬০ কোটি টাকা প্রদান করা সম্ভব হবে। তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনায় অপ্রত্যাশিতভাবে যে সমস্ত কৃষকের শস্যের ক্ষতি হয়েছে, তাঁরা উপকৃত হয়েছেন। পুরাতাত্ত্বিক এই আবিষ্কারগুলি সম্পর্কে সমীক্ষা, গবেষণা ও তথ্য নিবন্ধের আকারে প্রকাশিত হচ্ছে ‘পালেভোল রিভিউ’ পত্রিকাটিতে। এই আবিষ্কারের কাজে সাফল্যের জন্য ভারত-ফ্রান্স যৌথ সমীক্ষা ও গবেষণাদলটিকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ফ্রাঁসোয়া ওলাঁদ। আমাকে এবং আমার প্রতিনিধিদলের জন্য যে উদার আতিথেয়তার ব্যবস্থা করা হয়েছেসেজন্য আমি কৃতজ্ঞ। আজ আমার আফ্রিকা সফরের চতুর্থ দিনে প্রাণচঞ্চল দার এস সালামে উপস্থিতথাকতে পারা নিঃসন্দেহে এক আনন্দের বিষয়। মাননীয় প্রেসিডেন্ট, আমাদের দু’দেশেরসম্পর্কের শক্তি ও ভবিষ্যৎ সম্ভাবনা সম্পর্কে আপনার বক্তব্যের সঙ্গে আমি সম্পূর্ণএকমত। আফ্রিকার পূর্ব উপকূল, বিশেষত তানজানিয়ার সঙ্গে ভারতের গড়ে উঠেছে একশক্তিশালী সহযোগিতার সম্পর্ক। সুপ্রাচীনকাল থেকেই সামুদ্রিক দিক থেকে আমরা একেঅপরের প্রতিবেশী। ভারত ও তানজানিয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধিরা ঊনিশ শতকের গোড়া থেকেই দু’দেশেরমধ্যে বাণিজ্যিক সম্পর্কের সূচনা করেছেন। সুবিস্তৃত ভারত মহাসাগর সংযোগ ঘটিয়েছেদু’দেশের সমাজ ও জনগোষ্ঠীর মধ্যে। রবিবার দিনটিতে আমি এখানে উপস্থিত থাকব, এই প্রস্তাবে সানন্দেই সায় ওসম্মতি জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট ম্যাগাফুলি। এজন্য আমি গভীরভাবে কৃতজ্ঞ তাঁর কাছে।“হাপা কাজি তু” (এখানে কাজই আগে)– তাঁর এই মতাদর্শকেই সম্মান জানিয়েছেন তিনি। ভারত ইতিমধ্যেই তানজানিয়ার এক শক্তিশালী অর্থনৈতিক সহযোগী হয়ে উঠেছে।আমাদের অর্থনৈতিক সম্পর্কের সবক’টি ক্ষেত্রই কাজ করে চলেছে স্বাভাবিকভাবে। এরবিকাশও ঘটে চলেছে স্বাভাবিক নিয়মে। • আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক লেনদেনের পরিমাণদাঁড়িয়েছে বার্ষিক ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের মতো; • তানজানিয়ায় ভারতের বিনিয়োগের পরিমান ইতিমধ্যেইপৌঁছে গেছে ৩ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের কাছাকাছি; এবং • তানজানিয়ায় ভারতের ব্যবসা-বাণিজ্য ক্রমশ বৃদ্ধি ওপ্রসার লাভ করে চলেছে। উন্নয়নের ক্ষেত্রে তানজানিয়ার অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত ক্ষেত্রগুলিতে বিশ্বস্তসহযোগী হয়ে ওঠার ঘটনাকে আমরা এক বিশেষ সুযোগ বলেই মনে করি। প্রেসিডেন্ট ম্যাগাফুলির সঙ্গে আজ আমি অংশীদারিত্বের সবক’টি ক্ষেত্র সম্পর্কেইবিস্তারিতভাবে আলোচনা ও মতবিনিময় করেছি। আমাদের লক্ষ্যই ছিল সহযোগিতামূলক এক কার্যসূচি গড়ে তোলা যাতে শুধুমাত্রসম্ভাবনার কথা না বলে বরং বাস্তবের জমিতে সাফল্যের বীজ বপন করার দিকেই বেশি আগ্রহীহয়ে উঠি আমরা। এই লক্ষ্যে আমরা দুটি দেশই অনুভব ও উপলব্ধি করেছি যে : • দ্বিতীয়ত, প্রাকৃতিক গ্যাসআহরণ ও তা ব্যবহারেরউদ্দেশ্যে একযোগে কাজ করে যেতে হবে আমাদের। • চতুর্থত, দু’দেশের শিল্পক্ষেত্রগুলিকে আরও বেশিকরে উৎসাহদানের মাধ্যমে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতাকে আরও সুদৃঢ় করে গড়ে তুলতেপারি আমরা । একটি বিকাশশীল দেশ হিসেবে ভারত অনুভব ও উপলব্ধি করেছে দেশবাসীরজীবনযাত্রার মানোন্নয়নের প্রয়োজন ও গুরুত্বকে। একইভাবে এক বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে আপনাদের দেশবাসীর আশা-আকাঙ্ক্ষারউদ্দেশ্য পূরণের সঙ্গে সাযুজ্য রয়েছে আমাদের নিজস্ব কর্মপ্রচেষ্টারও। দার এস সালামে জল সরবরাহ বৃদ্ধির লক্ষ্যে১০০ মিলিয়ন ডলার ব্যয়ে রূপায়িত প্রকল্পটিরকাজ সম্পূর্ণ করা নিঃসন্দেহে এক উল্লেখযোগ্য সাফল্য। জাঞ্জিবারে ৯২ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তায় একটি জলসরবরাহ প্রকল্প গড়ে তোলার কাজেও কিছুক্ষণ আগেই আমরা চুক্তিবদ্ধ হয়েছি। ১৭টি শহরেঅন্যান্য জল প্রকল্প রূপায়ণের কাজেও যুক্ত রয়েছি আমরা। এই লক্ষ্যে সুবিধাজনক শর্তেআরও ৫০০ মিলিয়ন ডলার ঋণ সহায়তা প্রসারের প্রস্তাব বিবেচনা করতে প্রস্তুত ভারত।আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল জনস্বাস্থ্য। ক্যান্সার রোগীদেরচিকিৎসায় ভারতের রেডিও থেরাপি যন্ত্র বুগ্যান্ডো চিকিৎসাকেন্দ্রে সংস্থাপিত হচ্ছেবলে জানি আমি। আরুষায় আফ্রিকার নেলসন ম্যান্ডেলা বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানটিতে তথ্যপ্রযুক্তি সম্পর্কিত রিসোর্স সেন্টারের নির্মাণ কাজবর্তমানে সম্পূর্ণ প্রায়। আপনাদের প্রয়োজন ও অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেই ভারততার সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেবে তানজানিয়ার উদ্দেশে। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে পরস্পরের প্রতিবেশী হওয়ার সুবাদে নৌ-পরিবহণ সহনিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষার সবক’টি ক্ষেত্রেই আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্ককেসার্বিকভাবে এগিয়ে নিয়ে যেতে সহমত প্রকাশ করেছি আমি ও প্রেসিডেন্ট ম্যাগাফুলি। আঞ্চলিক ও বিশ্ব পর্যায়ে আমাদের বিস্তারিত আলোচনা ও মতবিনিময়ের মধ্য দিয়েপ্রতিফলিত হয়েছে দু’দেশের সাধারণ স্বার্থ ও উদ্বেগের বিষয়গুলিও। সন্ত্রাসবাদ ও জলবায়ু পরিবর্তন – এই দুটি চ্যালেঞ্জের দ্বৈত মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক,আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করে যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছি আমরাউভয়েই। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রশ্নে প্যারিসের সিওপি-২১ শীর্ষ বৈঠকে আন্তর্জাতিকসৌর সমঝোতা গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় নেতৃত্ব দিয়েছে ভারত। তানজানিয়ার প্রত্যেক প্রেসিডেন্টকে ভারতে স্বাগত জানানোর সম্মান ওসৌভাগ্য হয়েছে ভারতের। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রেসিডেন্ট ম্যাগাফুলিকে ভারতে স্বাগত সম্ভাষণজানাতে পারব এই অপেক্ষায় রইলাম। পরিশেষে, মাননীয় প্রেসিডেন্টকে আমি ধন্যবাদ জানাইতাঁর মৈত্রী ও আন্তরিকভাবে আমাকে অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। এছাড়াও, কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আইসিএআই এবং আইসিএইডব্লিউ – এর মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্র পুনর্নবীকরণে অনুমতি দিয়েছে। ব্রিটেনের বিভিন্ন সংস্থায় একাধিক ভারতীয় চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্ট উচ্চ পদে কর্মরত রয়েছেন। জাতীয় আইন দিবস – ২০১৭ উপলক্ষে রবিবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত একঅনুষ্ঠানের সমাপ্তি পর্বে ভাষণ দেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি তাঁরভাষণে ভারতীয় সংবিধানকে দেশের গণতান্ত্রিক কাঠামোর এক অবিনশ্বর আত্মারূপে বর্ণনাকরেন। তিনি বলেন, আমাদের সংবিধান সময়ের পরীক্ষায় উত্তীর্ণ। এ সম্পর্কে যাঁরানেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন, তাঁরা যে ভ্রান্ত – একথাও প্রমাণিত হয়েছে সংবিধানের এইপরীক্ষায়। ডঃ বি আর আম্বেদকর, ডঃ সচ্চিদানন্দ সিনহা, ডঃ রাজেন্দ্র প্রসাদ এবং ডঃসর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের বিভিন্ন সময়ের উক্তি এদিন প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন তাঁরভাষণে। সংবিধান ও সরকারি প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ দিকগুলি তুলে ধরতেই তিনিপুনরুচ্চারণ করেন এই উক্তিগুলির। সংবিধানের স্থায়িত্ব এবং তার উপযোগিতা ও নমনীয়তাপ্রসঙ্গে বিভিন্ন সময়ে ঐ উক্তিগুলি করা হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান হ’ল আমাদের অভিভাবক অর্থাৎ পথপ্রদর্শক। তাই,সংবিধানের নির্দেশ অনুসারে আমাদের সকলেরই কাজ করে যাওয়া উচিৎ। দেশের প্রয়োজন এবংচাহিদাগুলির দিকে লক্ষ্য রেখে সরকারি বিভিন্ন সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের উচিৎ পরস্পরকেসমর্থন জানানো ও শক্তিশালী করে গড়ে তোলা। কিন্তুদুর্ভাগ্য যে, স্বাধীনতার সেই প্রত্যুষকালে যে সমস্ত ত্রুটি ও দুর্বলতা চিহ্নিতকরা হয়েছিল, তার সবগুলিকে এখনও পর্যন্ত পুরোপুরি দূর করা যায়নি। তাই, ‘নতুন ভারত’ গঠনের কাজে এই গঠনমূলক পরিবেশ ও পরিস্থিতিকে কাজেলাগানো উচিৎ। এই সমস্ত উদ্যোগ সমাজের সকল স্তরেরমানুষের ওপর এক ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। বিচার-ব্যবস্থায়দীর্ঘদিন ধরে ঝুলে থাকা মামলাগুলির দ্রুত নিষ্পত্তিতে লোক আদালত এক গুরুত্বপূর্ণভূমিকা পালন করতে পারে বলে উল্লেখ করেন তিনি। ন্যায়-বিচার পাওয়ার কাজ আরও সহজ করেতুলতে যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে তারও একটি রূপরেখা এদিন তুলে ধরেন তিনি। প্রশাসন, আইন এবং বিচার বিভাগীয় কাজকর্মের মধ ্যে ভারসাম্য রক্ষার ওপর বিশেষগুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। বর্তমানে যোজনা কমিশনের অস্তিত্ব না থাকায় সচিব পদটিও তুলে দেওয়া হয়েছে। গুরুগোবিন্দ সিং-জি কিভাবে বহু মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছেন সে কথা জানা উচিৎ সমগ্রবিশ্ববাসীর। শুধুমাত্র সাহসিকতাই নয়, আরও অনেক গুণ ওবৈশিষ্ট্য ছিল গুরু গোবিন্দ সিং-জির ব্যক্তিত্বে যা আমাদের মধ্যে সম্ভ্রম জাগিয়েতোলে। আজপাটনায় শ্রী গুরু গোবিন্দ সিং-জি মহারাজের ৩৫০তম ‘প্রকাশ পর্ব’ অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েএ কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভবিষ্যৎপ্রজন্মকে মদ্যপান থেকে দূরে রাখতে বিহারের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতীশ কুমার যেউদ্যোগ গ্রহণ করেছেন সেজন্য তাঁর বিশেষ প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বুধবারের বৈঠকে ভারত ও ইউক্রেনের মধ্যে কৃষি ও খাদ্যশিল্প ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষে চুক্তি স্বাক্ষরে অনুমোদন পাওয়া গেছে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে কৃষি ও খাদ্য শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার আরও প্রসার ঘটবে। প্রতি দু বছরে এই কর্মীগোষ্ঠীর বৈঠক একবার ভারতে ও পরেরবার ইউক্রেনে আয়োজিত হবে। আমি এই ধরনের হিংসার কঠোর নিন্দা করি এবংসকলের কাছে আর্জি জানাই শান্তি বজায় রাখার জন্য। আইন ও শৃঙ্খলাপরিস্থিতির ওপর সতর্ক দৃষ্টি রাখা হচ্ছে। জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা এবং স্বরাষ্ট্রসচিবের সঙ্গে আমি পরিস্থিতির পর্যালোচনাও করেছি। রবিবার ছত্তিশগড়, ওড়িশা এবং পশ্চিমবঙ্গ সফরে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ছত্তিশগড়ের নয়া রায়পুরে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় বাসস্থান নির্মাণ প্রকল্পের শিলান্যাস করবেন তিনি। ঐ রাজ্যের রাজনন্দগাঁও জেলার কুরুভাটে শ্যামা প্রসাদ মুখার্জি ন্যাশনাল রারবান মিশনের আনুষ্ঠানিক সূচনাও করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই মিশনটির লক্ষ্য হল, দেশের সবকটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে পল্লী উন্নয়ন সংক্রান্ত একগুচ্ছ প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া। দেশের সবকটি বড় বড় বন্দরের ক্ষেত্রেই এই নীতি কার্যকর হবে। এই সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের দিকে দৃষ্টি রেখে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ভূমিকাকে আরও সফল ও কার্যকর করে তুলতেও বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে সরকার, যাতে সরকারি কাজ ও পরিষেবার ক্ষেত্রে দক্ষতা সুনিশ্চিত করার কাজে বেসরকারি বিনিয়োগকেও ব্যবহারকরা যায়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিশিষ্ট সুরকার শ্রী রবীন্দ্র জৈন-এর প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “শ্রী রবীন্দ্র জৈন তাঁর বহুমুখী সঙ্গীত প্রতিভা ও অদম্য লড়াকু মনোভাবের জন্য স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ওঁর প্রয়াণে আমি ব্যথিত। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার মুম্বাইয়ে রিপাবলিক টিভি আয়োজিত সভায় ভাষণ দেন। মুম্বাইয়ে গতকাল এক হাসপাতালে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জীবনহানিতে তিনি দুঃখ প্রকাশ করেন। এক প্রগতিশীল ও সমৃদ্ধ রাষ্ট্র গঠনের স্বার্থে তিনি ইতিবাচক সংবাদের গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ভারত’কে বিজ্ঞান, উদ্ভাবন, ক্রীড়ার মতো বিভিন্ন ক্ষেত্রে নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে তিনি গণমাধ্যমের কথাও বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, ‘দ্রুত বিকাশশীল ভারত’ – এই শব্দবন্ধটি ১৩০ কোটি ভারতবাসীর প্রাণস্পন্দনকেই প্রতিফলিত করে। তিনি দৃষ্টান্ত-স্বরূপ বলেন, অপরাধমূলক কাজকর্মের সঙ্গে জড়িতদের কিভাবে আজ বিচারের আঙিনায় নিয়ে আসা হচ্ছে। স্বচ্ছতা থেকে কর ক্ষেত্রে সংস্কারের মতো কয়েকটি বিষয়ের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিভাবে এই উদ্যোগগুলি বিগত চার বছরে পরিবর্তন নিয়ে এসেছে। কেন্দ্রীয় সরকার এখন নীতি-চালিত প্রশাসন এবং প্রত্যাশিত স্বচ্ছ নীতির মাধ্যমে এগিয়ে চলেছে। এ ধরণের পর্যালোচনা বৈঠকের ফলস্বরূপ ১২ কোটি লক্ষ মূল্যের বিভিন্ন প্রকল্পের রূপায়ণে গতি সঞ্চারিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জোর দিয়ে বলেন যে, সঠিক পদক্ষেপ গ্রহণের মধ্য দিয়ে আইন-শৃঙ্খলার বিষয়টি দেখভাল করা প্রয়োজন। এ প্রসঙ্গে তিনি ঋণ শোধে অক্ষমতা এবং দেউলিয়াবিধির কথা বিশেশভাবে উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী ইঙ্গিত দেন যে, খুব শীঘ্রই বিলাসবহুল সামগ্রীর ওপর ২৮ শতাংশ হারে জিএসটি লাগু হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার তার বাস ভবনে সদ্য সমাপ্ত অষ্টাদশ এশিয়ান গেমস্‌-এর পদক জয়ীদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় মিলিত হন। প্রধানমন্ত্রী পদকজয়ীদের অভিনন্দন জানান এবং এশিয়ান গেমস্‌-এ ভারতের সবচেয়ে বেশি পদক জয়ের জন্য খেলোয়াড়দের অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্যের প্রশংসা করেন। তিনি পদক জয়ীদের বলেন, ক্রীড়া ক্ষেত্রে তাঁদের সাফল্য ভারতের মর্যাদা ও গর্ব বাড়িয়েছে। পদক জয়ীরা তাঁদের সাফল্য ও প্রশংসার জন্য নিজেদের লক্ষ্য থেকে বিচ্যুত হবেন না এবং তাঁরা লক্ষ্য পূরণে আরও এগিয়ে যাবেনবলে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন। খেলোয়াড়দের ক্রীড়া নৈপুণ্য আরও বাড়াতে শ্রী মোদী প্রযুক্তি ব্যবহারের আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন, খেলাধূলার উৎকর্ষতা বিশ্লেষণে বিশ্বে ভারতের সেরা খেলোয়াড়দের পাশাপাশি অন্যান্য খেলোয়াড়রাও তাঁদের ক্রীড়ার মান বাড়াতে প্রযুক্তির সাহায্য নিয়ে চলবেন। প্রধানমন্ত্রী ছোট শহর, গ্রামাঞ্চল ও অনগ্রসর অঞ্চল থেকে উঠে আসা তরুণ ও প্রতিভাবান খেলোয়াড়দের দেশের হয়ে পদক জয়ের জন্য আনন্দ ও খুশি প্রকাশ করেন। দেশকে পদক এনে দিতে যে কয়েকজন ক্রীড়াবিদ কঠিন সমস্যার সম্মুখীন হয়েছেন, তাঁদের নাম উল্লেখের সময় প্রধানমন্ত্রী আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। এই সমস্ত ক্রীড়াবিদদের জেদ ও আন্তরিকতার প্রতি সম্মান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী আশা প্রকাশ করেন যে, এদের কঠোর পরিশ্রম ও প্রয়াস সমগ্র দেশকে অনুপ্রাণিত করবে। প্রধানমন্ত্রী ক্রীড়াবিদদের অর্জিত সাফল্য ও প্রশংসায় তুষ্ট না হয়ে তাঁদেরকে আরও সাফল্যের জন্য কঠিন পরিশ্রমের পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, পদক জয়ীদের জন্য আরও বড় চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য এখন থেকেই তৈরি হতে হবে এবং অলিম্পিক গেমস্‌-এর পোডিয়ামে ওঠার জন্য তাঁদেরকে উদ্দেশ্য থেকে লক্ষ্যভ্রষ্ট হওয়া চলবে না। এই উপলক্ষে যুব বিষয়ক ও ক্রীড়া তথা তথ্য ও সম্প্রচার প্রতি মন্ত্রী কর্ণেল রাজ্যবর্ধন রাঠোর-ও উপস্থিত ছিলেন। তাঁর প্রারম্ভিক ভাষণে কর্ণেল রাঠোর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর দূরদৃষ্টি ও সরকারের উদ্যোগ সদ্যসমাপ্ত এশিয়ান গেমস্‌-এর পদক সংখ্যা বাড়াতে এবং তরুণ ক্রীড়াবিদদের অনুপ্রাণিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শ্রী সি কে জাফর শরিফের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “শ্রী সি কে জাফর শরিফজির আকষ্মাৎ প্রয়াণে আমি মর্মাহত। বর্ষিয়ান এই সাংসদ সংসদের কাজকর্ম সুষ্ঠুভাবে চালাতে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা নিয়েছেন। কর্ণাটকের দাবি-দাওয়া দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছে দেওয়ার সফল কন্ঠ ছিলেন তিনি। স্বামী দয়ানন্দ সরস্বতী জয়ন্তী উপলক্ষে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আমার প্রিয় দেশবাসী, নমস্কার! শিবকুমার স্বামী তাঁর গোটা জীবনটি সমাজ সেবার কাজে সমর্পণ করেছিলেন। ভগবান বসবেশ্বর আমাদের শিখিয়েছেন —’কায়কবেকৈলাশ’ — অর্থাৎ কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে নিজের দায়িত্ব পালন করে যাওয়া, ভগবান শিবের নিবাস কৈলাশধামে পৌঁছোনরই সামিল। শিবকুমার স্বামী এই দর্শনে বিশ্বাসী ছিলেন এবং তিনি তাঁর ১১১বছরের জীবনকালে হাজার হাজার মানুষের সামাজিক, শিক্ষাগত এবং আর্থিক উন্নতির জন্যে কাজ করে গেছেন। তিনি এমনই একজন বিদ্বান মানুষ হিসেবে খ্যাত ছিলেন, একই সঙ্গে ইংরেজি, সংস্কৃত ও কন্নড় ভাষাতে যাঁর ছিল অদ্ভুত দখল। মানুষের খাদ্য, আশ্রয়, শিক্ষা এবং আধ্যাত্মিকজ্ঞানের সংস্থানের জন্য তিনি তাঁর পুরো জীবনটাই উৎসর্গ করে দিয়েছিলেন। তাঁর প্রথম চাহিদাই ছিল কৃষকদের সার্বিক কল্যাণ সাধন। সিদ্ধ গঙ্গামঠ নিয়মিত পশু এবং কৃষিমেলার আয়োজন করে। আমার সৌভাগ্য হয়েছে বেশকয়েকবার পরম পূজনীয় স্বামীজীর আশীর্বাদ লাভ করার। ২০০৭ সালে শিবকুমার স্বামীর শতবর্ষ উপলক্ষে পূর্ববর্তী রাষ্ট্রপতি ডঃ এ. পি. জে. আবদুল কালাম টুমকুর গিয়েছিলেন। শ্রদ্ধেয় স্বামীজীর উদ্দেশে কালাম সাহেব একটি কবিতাও শুনিয়েছিলেন। ” হে আমার সহ-নাগরিকবৃন্দ — দানের মধ্যেই আপনারা সুখের আস্বাদ পাবেন। দেহে এবং মনে আপনার কত কিছুই না দেবার আছে। যদি আপনার জ্ঞান থাকে, তা ভাগ করে নিন ডঃ কালামের এই কবিতা শ্রী শ্রী শিবকুমার স্বামীর জীবন এবং সিদ্ধগঙ্গামঠের লক্ষ্যকে সুন্দরভাবে প্রকাশ করেছে। গতকালই আমরা উৎসাহ উদ্দীপনার সঙ্গে সাধারণতন্ত্র দিবসও পালন করেছি। কিন্তু আজ আমি এই বিষয়ে অন্য কিছু কথা বলতে চাই। ভারতের প্রতিটি নাগরিক, যিনি নথিভুক্ত অর্থাৎ রেজিস্টার্ড ভোটার, তিনি যাতে ভোট দিতে পারেন, তা সুনিশ্চিত করার জন্যে আমাদের দেশে চেষ্টার কোনও ত্রুটি রাখা হয়না। হিমাচল প্রদেশে সমুদ্রতল থেকে ১৫ হাজার ফিট ওপরের এলাকাতেও যেমন নির্বাচন কেন্দ্র স্থাপিত হয়, তেমনই আন্দামান-নিকোবরের দূরবর্তী দ্বীপগুলিতেও ভোটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়ে থাকে। এছাড়া গুজরাতের সেই কেন্দ্রটির কথাতো আপনারা নিশ্চয়ই শুনেছেন যেখানে গিরঅরণ্যের মধ্যে মাত্র একজন ভোটদাতার জন্যে একটি পোলিং বুথ করা হয়। কল্পনা করুন, মাত্র একজন ভোটদাতার জন্যে। এসব কথা শুনলে নির্বাচন কমিশনের জন্যে গর্ব হওয়া খুবই স্বাভাবিক। আমাদের লোকতন্ত্রকে মজবুত করতে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালানোর জন্যে আমি নির্বাচন কমিশনের প্রশংসা করি। প্রত্যেকটি রাজ্যে নির্বাচন কমিশন, যাবতীয় সুরক্ষা কর্মী এবং অন্যান্য কর্মচারীবৃন্দ যাঁরা নির্বাচন প্রক্রিয়ায় অংশ নেন এবং স্বাধীন ও পক্ষপাতহীন নির্বাচন সুনিশ্চিত করেন তাঁদের সকলকে আমি সাধুবাদ জানাই। এই বছর আমাদের দেশে লোকসভা নির্বাচন হবে। একবিংশ শতাব্দীতে জন্ম নেওয়া যুবক-যুবতীদের লোকসভা নির্বাচনে নিজেদের ভোট দেওয়ার এটাই হবে প্রথম সুযোগ। তাঁদের কাছে দেশের দায়িত্ব নিজেদের কাঁধে নেওয়ার সময় এসে গেছে। দেশের বিভিন্ন বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে তাঁরা অংশগ্রহণ করতে চলেছেন। দেশের স্বপ্নের সঙ্গে নিজেদের স্বপ্নকে মিলিয়ে নেওয়ার সময় এসে গেছে। আমি যুবসম্প্রদায়কে অনুরোধ করব যে তাঁরা যদি ভোটদানের উপযুক্ত হন তাহলে ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম নথিভুক্ত করুন। আমাদের দেশ বহুরত্ন-বসুন্ধরা। এই সমস্ত মহাপুরুষদের একজন ছিলেন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস। ২৩-শে জানুয়ারি সমগ্র দেশ বিভিন্নভাবে তাঁর জন্মদিন পালন করেছে। নেতাজীর জন্মদিনে ভারতের স্বাধীনতা যুদ্ধে যাঁরা অংশগ্রহণ করেছিলেন, সেইসব বীরসেনানীদের উদ্দেশে সমর্পিত এক সংগ্রহশালার উদ্বোধন করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। আপনারা জানেন যে স্বাধীনতার পর থেকে এখনও পর্যন্ত লালকেল্লার ভিতর বেশকিছু ঘর-বাড়ি বন্ধপড়েছিল। লালকেল্লার সেই সমস্ত বন্ধঘরগুলিকে খুব সুন্দর একটি সংগ্রহশালার রূপ দেওয়া হয়েছে। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস এবং ইণ্ডিয়ান ন্যাশনাল আর্মি-র উদ্দেশে সমর্পিত সংগ্রহশালা ‘ইয়াদ-এ-জলিয়াঁ’ এবং ১৮৫৭-র ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রতি সমর্পিত সংগ্রহশালা—এই সম্পূর্ণ পরিসরকে ‘ক্রান্তি মন্দির’ রূপে দেশকে সমর্পণ করা হয়েছে। এই সংগ্রহশালার প্রতিটি ইঁটে আমাদের গৌরবশালী ইতিহাসের সৌরভ রয়েছে। এই সংগ্রহশালায় স্তরেস্তরে বর্ণিত আমাদের স্বাধীনতা সংগ্রামের বীর সেনানীদের কাহিনি আমাদের ইতিহাসের দিকে ফিরে তাকাতে অনুপ্রাণিত করবে। এইখানে ইংরেজ শাসকরা ভারতমায়ের বীর সন্তান কর্ণেল প্রেমসেহগল, কর্ণেল গুরু বক্সসিংহধীলঁ এবং মেজর জেনারেল শাহনওয়াজ খানের বিচার করেছিল। আমি যখন লালকেল্লার ক্রান্তি মন্দিরে নেতাজীর সঙ্গে সম্পর্কিত জিনিষগুলি দেখছিলাম, তখন নেতাজীর পরিবারের সদস্যরা আমাকে একটি বিশেষ ধরনের টুপি উপহার দেন। এক সময় নেতাজী এই টুপি ব্যবহার করতেন। এই টুপিটি আমি সংগ্রহশালায় রাখার ব্যবস্থা করেছি, যাতে সংগ্রহশালা দেখতে আসা মানুষ এই টুপিটি দেখেন এবং দেশভক্তির অনুপ্রেরণা পান। আমাদের দেশনায়কদের শৌর্য, দেশভক্তির কথা আমাদের নবীন প্রজন্মের কাছে বিভিন্ন মাধ্যমে নিরবচ্ছিন্নভাবে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন। এই মাসখানেক আগে — গত ৩০শে ডিসেম্বর আমি আন্দামান-নিকোবর দ্বীপপুঞ্জে গিয়েছিলাম। নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোস ৭৫বছর আগে যেখানে প্রথম ত্রিবর্ণ পতাকা উত্তোলন করেছিলেন ঠিক সেই একই জায়গায় এক অনুষ্ঠানে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। একইভাবে ২০১৮ সালের অক্টোবর মাসে যখন লালকেল্লাতে ত্রিবর্ণ পতাকা উত্তোলন করা হয়, তখন সবাই আশ্চর্য হয়েছিল, কেননা ওখানেতো সাধারণভাবে ১৫-ই আগষ্ট দিনটিতেই পতাকা উত্তোলনের পরম্পরা আছে। কিন্তু সেটা ছিল আজাদ হিন্দ সরকার গঠনের ৭৫বছর পূর্ণ হওয়ার ঘটনা। “দিল্লি চলো”, “তোমরা আমাকে রক্ত দাও, আমি তোমাদের স্বাধীনতা দেব” —এই ধরনের তেজস্বী স্লোগান দিয়ে নেতাজী সমস্ত ভারতবাসীর অন্তরে স্থান করে নিয়েছেন। বেশকিছু বছর যাবৎ একটা দাবী ছিল যে নেতাজী সম্পর্কিত সব ফাইল সার্বজনিক করতে হবে। আমি আনন্দিত যে আমরা এই কাজ সম্পন্ন করতে পেরেছি। সেইদিনটি আমার মনে আছে, যেদিন নেতাজীর পরিবারের সকলে প্রধানমন্ত্রীর বাসস্থানে এসেছিলেন। আমরা সকলে মিলে নেতাজী সম্পর্কিত অনেক কথা আলোচনা করেছিলাম এবং নেতাজী সুভাষ বসুকে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করেছিলাম। আমি আনন্দিত যে ভারতের মহাননায়কদের স্মৃতি বিজড়িত বেশকিছু জায়গাকে দিল্লিতে প্রদর্শনের চেষ্টা করা হচ্ছে। সেটা বাবা সাহেব আম্বেদকরের সঙ্গে সম্পর্কিত ২৬, আলিপুর রোড হোক বা সর্দার প্যাটেল সংগ্রহশালা, অথবা ক্রান্তি মন্দির। আপনারা দিল্লি এলে এই জায়গাগুলি অবশ্যই দেখবেন। আমার প্রিয় দেশবাসী, আজ আমরা যখন নেতাজী সুভাষচন্দ্র বোসের সম্পর্কে আলোচনা করছি এবং সেটা ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে, তখন আমি নেতাজীর জীবনের একটি ঘটনা আপনাদের জানতে চাই। আমি সবসময়ই সাধারণ মানুষের সঙ্গে যোগাযোগের জন্য রেডিওকে এক গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হিসেবে মান্যতা দিই। সেরকমই রেডিওর সঙ্গে নেতাজীর খুব গভীর সম্পর্ক ছিল। দেশবাসীর সঙ্গে বার্তা আদান-প্রদানের জন্য উনিও রেডিওকেই বেছে নিয়েছিলেন।সন ১৯৪২-এ সুভাষচন্দ্র বোস আজাদ হিন্দ রেডিও-র শুভারম্ভ করেছিলেন এবং রেডিওর মাধ্যমে তিনি আজাদ হিন্দ ফৌজের সৈনিকদের এবং দেশের মানুষের কাছে বার্তা পৌঁছে দিতেন। সুভাষচন্দ্র বোসের রেডিওতে কথা শুরু করার এক বিশেষ ধরন ছিল। আমাকে জানানো হয়েছে যে, রেডিও স্টেশন সাপ্তাহিক খবরও প্রচার করত ইংরেজী, হিন্দী, তামিল, বাংলা, মারাঠী, পাঞ্জাবী, পুস্তু, ঊর্দু ইত্যাদি ভাষাতে। এই রেডিও স্টেশন চালাতে গুজরাত নিবাসী এম. আর.ব্যাস মহাশয় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিলেন। এই ক্রান্তি মন্দিরে একটি চিত্রসংগ্রহশালাও তৈরি হয়েছে। ভারতীয় কলা ও সংস্কৃতিকে আকর্ষণীয় করার এটা হলো আরো এক প্রচেষ্টা। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ পুনর্গঠন ওউন্নয়ন সংক্রান্ত ইউরোপীয় ব্যাঙ্কের (ইবিআরডি) সদস্যপদে ভারতের অন্তর্ভুক্তির একপ্রস্তাবে অনুমোদন দেওয়া হল। এজন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করবেকেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রকের অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত দপ্তর। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (১১ মার্চ) আবু ধাবির যুবরাজ এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহীর সেনাবাহিনীর সর্বময় উপ-অধিকর্তা শেখ মহম্মদ বিন জায়েদ আল-নাহ্‌য়ান-এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। উভয় নেতাই সামগ্রিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক ক্রমশ সুদৃঢ় হওয়ার ব্যাপারে সন্তোষ প্রকাশ করেন। দু’জনেই দ্বিপাক্ষিক সুসংবদ্ধ কৌশলগত অংশীদারিত্বকে আরও সম্প্রসারিত করার ব্যাপারে তাঁদের অঙ্গীকারের কথা পুনরায় প্রকাশ করেন। এ মাসের গোড়ায় আবু ধাবিতে ইসলামিক সহযোগিতা সংগঠনের দেশগুলির বিদেশ মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে সম্মানীয় অতিথি হিসেবে ভারতকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী সে দেশের যুবরাজকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁর ঐতিহাসিক পর্তুগাল সফরকালে এক বিশেষ আলাপচারিতায় মিলিত হন লিসবন-এ বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের এক অনুষ্ঠানে। সেখানে তিনি তাঁর বক্তব্যেতুলে ধরেন ভারত-পর্তুগাল অংশীদারিত্বের কয়েকটি বিশেষ দিক। পর্তুগালেরভূতপূর্ব প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টোনিও গুটেরাস-এর সঙ্গে তাঁর সাক্ষাতের কথাও এদিনস্থান পায় প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। শ্রী মোদীবলেন, ভারত হল বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম বিকাশশীল দেশগুলির অন্যতম। ভারতীয় মহাকাশগবেষণা সংস্থা ইসরোর প্রশংসা করে তিনি বলেন যে মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে আমাদেরবিজ্ঞানীরা অসাধ্যসাধন করেছেন। সম্প্রতি উৎক্ষিপ্ত হয়েছে ৩০টি ন্যানো উপগ্রহ। পর্তুগালেরসাম্প্রতিক দাবানলে প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক ও দুঃখপ্রকাশ করেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। মন্ত্রণালয় পর্যায়ে একটি ঘোষণাও করা হয় সম্মেলনের শেষে। নয়াদিল্লি, ১২ এপ্রিল, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার তুলুজ-এ এয়ারবাস কারখানা পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী এরপর, তুলুজ – এ অবস্থিত ন্যাশনাল সেন্টার ফর স্পেস স্টাডিজও পরিদর্শন করেন। তিনি সেখানে ভারতীয় বংশোদ্ভূত স্নাতকোত্তর স্তরের ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। নয়াদিল্লি, ৭ এপ্রিল, ২০১৫ আগা খান ডেভেলপমেন্ট নেটওয়ার্কের চেয়ারম্যান প্রিন্স করিম আগা খান আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বর্তমানে তিনি ভারতে সফররত এবং আগামীকাল তাঁকে পদ্মবিভূষণ পুরস্কার প্রদান করবেন রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়। তিনি ‘স্বচ্ছ ভারত’ অভিযান এবং ‘গঙ্গা পুনরুজ্জীবনে’র কাজে আগা খান ফাউন্ডেশনকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেওয়ার আহ্বান জানান। পাশাপাশি, মেয়েদের শৌচালয় গড়ে তোলার ক্ষেত্রেও ঐ ফাউন্ডেশনকে অংশগ্রহণ করার আহ্বান জানান তিনি। প্রিন্স করিম আগা খান বলেন, পদ্মবিভূষণ সম্মানে ভূষিত হওয়ায় তিনি সম্মানিত। তিনি এও জানান, এই ফাউন্ডেশন দেশে ১ লক্ষ শৌচালয় গড়ে তোলার গুরুদায়িত্ব নিয়েছে যা শুরু হবে গুজরাট রাজ্য থেকে। তিনি এও বলেন, দেশের মানুষের স্বাস্থ্য ও স্বাস্থ্যবিধান সম্পর্কে তাদের ওয়াকিবহাল করার কাজও এই ফাউন্ডেশন চালিয়ে যাচ্ছে। এছাড়া, উভয়েই পশ্চিম এশিয়ার পরিস্থিতির পর্যালোচনা করেন। এই প্রতিষ্ঠানের জন্য নতুন করে কোন তহবিল বরাদ্দ করা হয়নি। মার্কিনপ্রতিরক্ষা সচিব মিঃ অ্যাস্টন কার্টার বৃহস্পতিবার এখানে সাক্ষাৎ করেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ভারতও যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তোলার লক্ষ্যে মিঃকার্টারের বিশেষ অবদানের কথা উল্লেখ করে তাঁর বিশেষ প্রশংসা করেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। এ বছর জুন মাসে তাঁর সফল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরের কথাও প্রসঙ্গতস্মরণ করেন তিনি। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক নিবিড় ও শক্তিশালী দ্বিপাক্ষিকঅংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভারতের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথাও উল্লেখ করেন শ্রীনরেন্দ্র মোদী। এবছর জুন মাসে ভারতের প্রধানমন্ত্রীর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সফরকালে পারস্পরিকসমঝোতার ভিত্তিতে যে সমস্ত বিষয়ে দুটি দেশের মধ্যে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়, তাবাস্তবায়নের অগ্রগতি সম্পর্কে শ্রী মোদীকে অবহিত করেন মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার পাঞ্জাবে ১৯৬৫-র যুদ্ধে ভারতীয় সেনাবাহিনীর অসাধারণ সাফল্যের নিদর্শনস্বরূপ গড়ে তোলা তিনটি যুদ্ধ স্মারক পরিদর্শন করেন। প্রধানমন্ত্রী ডোগরাই যুদ্ধ স্মারক ও বারকি যুদ্ধ স্মারক দুটি পরিদর্শন করেন। ১৯৬৫-র যুদ্ধে ডোগরাই ও বারকি-র লড়াইয়ে অর্জিত সাফল্য ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষে নির্ণায়ক ভূমিকা নিয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী এ পর্যন্ত সবচেয়ে বড় ট্যাঙ্ক যুদ্ধ যেখানে হয়েছিল, সেই আসল উত্তর-এও যান যেখানে ভারতীয় সেনা এক বিরাট জয় পেয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী আব্দুল হামিদের স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় সেনা ও বিমান বাহিনীর আধিকারিক ও জওয়ানদের ডোগরাই ও বারকি যুদ্ধ স্মারক এবং হালওয়ারা বিমানঘাঁটিতে অভিনন্দন জানান ও তাঁদের সঙ্গে কথা বলেন। তিনি বলেন, এ বছর যেহেতু ১৯৬৫-র যুদ্ধের ৫০ বছর পূর্ণ হয়েছে সেজন্য তিনি এমন সব জায়গা বেছে নিয়েছেন, যেখানে সেনাবাহিনীর সাহসী যোদ্ধারা রক্ত ঝরিয়ে ও জীবনের বিনিময়ে দেশের জন্য চরম আত্মোৎসর্গ করে গেছেন। বিজাপুর জেলার জাংলা বিকাশ কেন্দ্রটিও পরিদর্শন করবেনপ্রধানমন্ত্রী। স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা কেন্দ্রের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানেসেখানকার আশা কর্মীদের সঙ্গে কথা বলবেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে প্রধানমন্ত্রীএকটি হাট-বাজার স্বাস্থ্য কিয়স্ক পরিদর্শনে গিয়ে সেখানকার স্বাস্থ্য কর্মীদেরসঙ্গে কথা বলবেন। জাংলায় একটি ব্যাঙ্কের শাখা উদ্বোধন করে মুদ্রা যোজনার আওতায় ঋণমঞ্জুরিপত্র বন্টন করবেন। গ্রামীণ বিপিও কর্মীদের সঙ্গেও কথা বলবেন প্রধানমন্ত্রী। পরে প্রধানমন্ত্রী এক জনসমাবেশেও ভাষণ দেবেন। আদিবাসীমানুষের ক্ষমতায়নের স্বার্থে সূচনা করবেন বন-ধন যোজনার। এই কর্মসূচির আওতায়ন্যূনতম সহায়ক মূল্যের সাহায্যে ছোটখাটো বনজ উৎপাদন বিপণনের ব্যবস্থা করা হবে। এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভানুপ্রতাপপুর –গুদাম রেলপথটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দাল্লি রাজারা এবংভানুপ্রতাপপুরের মধ্যে একটি ট্রেনের যাত্রারও সূচনা করবেন তিনি। এছাড়াও, বিজাপুরহাসপাতালে প্রধানমন্ত্রী একটি ডায়ালিসিস সেন্টারেরও এদিন উদ্বোধন করবেন। পরে একটি জনসমাবেশে ভাষণও দেবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী কয়লা ক্ষেত্র, স্পেকট্রাম এবং এফএম রেডিও-র লাইসেন্স প্রদানে নতুন নিলাম পদ্ধতির কথা উল্লেখ করেন এবং বলেন যে জনগণকে সুরক্ষিতভাবে তথ্য দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী সরকারি কাজকর্মে অবরুদ্ধকর পরিস্থিতির অবসানের জন্য আহ্বান জানান। তিনি বলেন, জনগণকে সন্দেহের চোখে দেখার পরিবর্তে জনগণকে বিশ্বাস করার ভিত্তিতে প্রশাসনিক প্রক্রিয়াকে চালাতে হবে । প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুশাসনের জন্য আরটিআই একটি হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বারাণসীর দীনদয়াল হস্তকলা সঙ্কুলে জাতীয় মহিলা জীবিকা সম্মেলন-২০১৯এ অংশগ্রহণ করেন। প্রধানমন্ত্রী উত্তরপ্রদেশ গ্রামীণ জীবিকা মিশনের সহযোগিতায় স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির উৎপাদিত পণ্য নিয়ে আয়োজিত প্রদর্শনীটি ঘুরে দেখেন। দীনদয়াল অন্তদ্বয় যোজনায় এনআরএলএম উত্তরপ্রদেশে সহযোগিতায় গঠিত মহিলাদের বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠী প্রধানমন্ত্রীকে ‘ভারত কে বীর’ তহবিলে ২১ লক্ষ টাকার চেক তুলে দেন। ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ৭৫ হাজার স্হান থেকে ৬৫ লক্ষ মহিলা এই অনুষ্ঠানে যোগ দেওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। মহিলাদের ক্ষমতায়নে বারাণসী উজ্জ্বল উদাহরণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী জানান, সব কেন্দ্রীয় সরকারের প্রকল্পে মহিলাদের অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে। শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, সরকার স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে ব্যাঙ্ক ঋণ সহ নানা সুবিধা দেওয়ায় সেগুলির উৎসাহ বেড়েছে। তিনি জানান, দেশে এখন ৫০ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে ৬ কোটি মহিলা যুক্ত। তাঁর সরকারের লক্ষ্য হল প্রতিটি পরিবারের একজন করে মহিলা সদস্য যেন একটি স্বনির্ভর গোষ্ঠীতে যুক্ত থাকেন। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলিকে আরও উদ্ভাবক এবং তাঁদের বাজার বোঝার ক্ষমতা বাড়ানোর পরামর্শ দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি কিষান সম্মান নিধি এবং আয়ুষ্মান ভারত যোজনার কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভারতে বিনিয়োগ সংক্রান্ত কাঠামো গড়ে তোলার ব্যাপারে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এই সমঝোতাপত্র বা মউ স্বাক্ষরের ফলে ভারতের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে উপযুক্ত বিনিয়োগের জন্য সৌদি আরবের প্রতিষ্ঠানগুলির সঙ্গে সংযোগ গড়ে তোলা সম্ভব হবে। নেপালের উপপ্রধানমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মিঃ বিমলেন্দ্র নিধিআজ এখানে এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরসঙ্গে। সাক্ষাৎকারকালে নেপালের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী সম্পর্কে শ্রী মোদীকেঅবহিত করেন তিনি। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “মহারাষ্ট্রের পালগাঁও-এ সেন্ট্রাল অ্যালুমিনিয়াম ডিপো’তে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় মানুষ প্রাণ হারিয়েছেন জেনে আমি শোকাহত। মৃত ব্যক্তিদের শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনকে জানাই আমার গভীর সমবেদনা। এই ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন, তাঁরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এই প্রার্থনা জানাই। আজ রাজধানীর কৃষি উন্নতি মেলায় কৃষকদের কাছে ভারতীয় কৃষির উন্নয়ন সম্পর্কে তাঁর চিন্তাভাবনার কথা প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কাজ কঠিন মনে হলেও লক্ষ্য পূরণ করার ক্ষেত্রে এই বিষয়টি একান্ত জরুরি। কৃষি উন্নতি মেলাকে ভারতের ভাগ্য পরিবর্তনের একটি বিশেষ মঞ্চ রূপে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, কৃষির বিকাশ, গ্রামীণ উন্নয়ন এবং কৃষকদের সমৃদ্ধির মধ্য দিয়েই ভারতের ভবিষ্যৎ গড়ে উঠতে পারে। সাম্প্রতিক কেন্দ্রীয় বাজেটের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এবারের বাজেট প্রস্তাবে এই ক্ষেত্রগুলির দিকে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে। প্রযুক্তি ও আধুনিকীকরণের মাধ্যমে দেশে কৃষি বিপ্লব ঘটানোর আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এই লক্ষ্যের প্রতি বিশেষভাবে সজাগ ও সচেষ্ট। এইভাবে যদি কৃষিক্ষেত্রে বৈচিত্র্য নিয়ে আসা যায়, তাহলে কৃষিকাজ সম্পর্কিতঝুঁকির মাত্রাও অনেকটা হ্রাস করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার সুফলগুলি ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংশ্লিষ্ট সকলের সঙ্গে পরামর্শ ও মত বিনিময়ের পরই চালু হয়েছে এই যোজনাটি। ন্যূনতম প্রিমিয়াম বা কিস্তির বিনিময়ে সর্বোচ্চ নিরাপত্তা সম্ভব করে তোলাই এই বিমা যোজনাটির বৈশিষ্ট্য। বিভিন্ন রাজ্য ও কৃষকদের মধ্যে ২০১৪-১৫ আর্থিক বছরের কৃষি কর্মন পুরস্কার বিতরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। কৃষকদের জন্য ‘কিষাণ সুবিধা’ নামে একটি মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনেরও সূচনা করেন তিনি। সংযুক্ত আরব আমীর শাহীর বিদেশ তথা আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বিষয়ক মন্ত্রী শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ান সোমবার এখানে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। আবুধাবির যুবরাজের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দনবার্তা তিনি পৌঁছে দেন ভারতের প্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রত্যুত্তরে শ্রী মোদীও যুবরাজের জন্য তাঁর আন্তরিক শুভেচ্ছার কথা জানিয়ে দেন। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা এবং দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে সম্পর্ক সহ দ্বিপাক্ষিক বিভিন্ন বিষয়ে কথা হয় শ্রী মোদী এবং শেখ আবদুল্লাহ বিন জায়েদ আল নাহিয়ানের মধ্যে। সংযুক্ত আরব আমীর শাহীর বিদেশ মন্ত্রী শ্রী মোদীকে জানান, ভারতের জ্বালানি, আবাসন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগের জন্য তাঁর দেশ আরও বেশি মাত্রায় আগ্রহী ও উৎসাহী হয়ে উঠেছে। এরপর, প্রধানমন্ত্রী অসমের উদ্দেশে রওনা দেবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাজস্থানের উদয়পুরে বেশ কয়েকটি প্রধান জাতীয় মহাসড়ক প্রকল্পেরসূচনা ও শিলান্যাস করেন। এইঅনুষ্ঠানে ভাষণকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তিনি মেওয়ারের ‘বীরভূমি’তেআসতে পেরেআনন্দিত। প্রধানমন্ত্রীপ্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষজনকে আশ্বস্ত করে বলেন যে এই অসুবিধার সময়কেন্দ্রীয় সরকার তাঁদের পাশে আছে আর, মানুষ যে সব বিপদ জয় করে আরও বেশি তেজে এগিয়েযাবে সে ব্যাপারে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, আজ একটিমাত্র অনুষ্ঠানের মাধ্যমেই ১৫ হাজার কোটি টাকারও বেশি অর্থমূল্যেরপ্রকল্পের হয় সূচনা আর না হয় শিলান্যাস করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীবলেন যে দেশের বিকাশের ক্ষেত্রে পরিকাঠামোমূলক প্রকল্পগুলি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। তিনিবলেন, ভারত পরিকাঠামোগত প্রকল্প, বিশেষ করে সংযোগমূলক প্রকল্পের ক্ষেত্রে বিলম্বসইতে পারবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে সড়ক নির্মাণের মতো প্রকল্পগুলি মানুষেরজীবনে নতুন শক্তি সঞ্চার করে। প্রধানমন্ত্রী,প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সূচনা করা স্বর্ণ চতুর্ভুজপ্রকল্পের উল্লেখ করে বলেন যে এটি কৃষকদের সঙ্গে বাজারকে সংযুক্ত কতে তাঁদেরপ্রভূত উপকারসাধন করেছিল। তিনি বলেন, রাজস্থান আরও ভালো পরিকাঠামোগত সংযোগ গড়েতোলার মাধ্যমে পর্যটন থেকে অনেক উপকৃত হতে পারে যেটা তাদের ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানএনে দেবে। শ্রী মোদী‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’ সম্পর্কে বলেন যে এই প্রকল্পের আওতায় গ্রামীণঘর-বাড়িতে এলপিজি সংযোগ দেওয়া হচ্ছে যার দ্বারা বিশেষ করে মহিলারা উপকৃত হচ্ছেন। তিনি বলেন,পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) দেশের অর্থনীতির বিরাট উপকার করেছে আন্তঃরাজ্য সীমানাগুলিতেদীর্ঘক্ষণের অপেক্ষার অবসান ঘটিয়ে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ উত্তর প্রদেশের বারাণসী সফর করেছেন। রবিদাস জয়ন্তী উদযাপন উপলক্ষে তিনি গুরু রবিদাসের জন্মস্থানে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। প্রধানমন্ত্রী বারাণসীতে ডিজেল রেল ইঞ্জিন কারখানায় ডিজেল থেকে ইলেক্ট্রিক বা বিদ্যুৎ-চালিত প্রথম রেল ইঞ্জিনের যাত্রা সূচনা করেন। ভারতীয় রেল তার সামগ্রিক কাজকর্মে ১০০ শতাংশ বিদ্যুতায়নের যে পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে, তার সঙ্গে সঙ্গতি রেখেই বারাণসীর ডিজেল রেল ইঞ্জিন কারখানা ডিজেল ইঞ্জিনগুলিকে বিদ্যুৎ-চালিত রেল ইঞ্জিনে পরিণত করার এক নতুন পদ্ধতি আবিষ্কার করেছে। এই রেল ইঞ্জিনটির পরীক্ষামূলক চলাচলের পর প্রধানমন্ত্রী কারখানাটি ঘুরে দেখেন এবং রেল ইঞ্জিনটির যাত্রা সূচনা করেন। জ্বালানি খাতে খরচ এবং কার্বন নিঃসরণের পরিমাণ কমাতেই এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগের আওতায় সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে ডিজেল থেকে ইলেক্ট্রিকে এই রূপান্তর ঘটানো হয়েছে। রবিদাস জয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী গুরু রবিদাসের মূর্তিতে শ্রদ্ধা জানান। এরপর, তিনি সের গোবর্ধনপুরে শ্রী গুরু রবিদাস জন্মস্থান মন্দিরে গুরু রবিদাসের জন্মস্থানে উন্নয়নমূলক প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীন্দ্রিয়বাদী কবি গুরু রবিদাসের শিক্ষা ও আদর্শ প্রতিদিনই আমাদের অনুপ্রাণিত করে। সমাজে যদি জাতি-ভিত্তিক বৈষম্য থাকে, তাহলে কোনও মানুষই একে অপরের সঙ্গে সম্পর্ক গড়ে তুলতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা শহর পরিকল্পনা ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে ভারত ও সিঙ্গাপুরের মধ্যে সহযোগিতা বাড়াতে যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়েছিল সেটি অনুমোদল করল। এ বছর ৩১ মে সমঝোতাপত্রটি স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতাপত্রের ফলে এছাড়াও, পরিকল্পনা- যেমন নগর পরিকল্পনা, জল ও বর্জ্য পরিচালন, কঠিন বর্জ্য পরিচালন প্রভৃতি ক্ষেত্রে ক্ষমতা সম্প্রসারণ করার কর্মসূচি গ্রহণ করা যাবে। নতুন দিল্লির রাষ্ট্রপতি ভবনে আজ (২৬ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯) রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, ২০১৫, ২০১৬, ২০১৭ এবং ২০১৮ সালের গান্ধী শান্তি পুরস্কার প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী, গৌরবময় গান্ধী শান্তি পুরস্কারপ্রাপকদের অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এই পুরস্কার এমনই এক সময় দেওয়া হচ্ছে যখন ভারত মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকী পালন করছে। এই প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন, বাপু’র অত্যন্ত প্রিয় ভক্তিগীতি ‘বৈষ্ণব জন তো’ গানটি সারা বিশ্বের প্রায় ১৫০টি দেশের শিল্পীরা গেয়েছেন। তিনি বলেন, এটা প্রমাণ করে গান্ধীজির আদর্শকে সারা বিশ্ব আজও প্রাসঙ্গিক বলে মনে করে। প্রধানমন্ত্রী, মহাত্মা গান্ধীর স্বচ্ছতার প্রতি দায়বদ্ধতা সম্বন্ধে বলেন। শ্রী মোদী বলেন, মহাত্মা গান্ধীর দূরদৃষ্টিসম্পন্ন প্রয়াসেই স্বাধীনতা সংগ্রাম জন-আন্দোলনে পরিণত হয়। তিনি আরও বলেন, মহাত্মা গান্ধী জন-ভাগিদারী এবং জন-আন্দোলন – এই দুই প্রবাহকে মিশিয়ে দিয়েছিলেন। মহারাষ্ট্রেররাজ্যপাল সি বিদ্যাসাগর রাও, মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ,মহারাষ্ট্র সরকারের মন্ত্রী শ্রী বিনোদ তাওড়ে, ভদ্রমহিলা ওভদ্রমহোদয়গণ, ওয়াধওয়ানি ইনস্টিটিউট ফর আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর উদ্বোধনঅনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সুযোগ লাভ করে আমি আনন্দিত। প্রথমেই এইপ্রতিষ্ঠানকে বাস্তবে মূর্ত করে তোলার লক্ষ্যে যৌথ প্রচেষ্টার জন্য আমি অভিনন্দনজানাই রমেশ ওয়াধওয়ানিজি ও সুনীল ওয়াধওয়ানিজি এবং মহারাষ্ট্র সরকার ও মুম্বাইবিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে। দরিদ্র সাধারণ মানুষের কল্যাণের মতো একটি সদিচ্ছাকেসঙ্গে নিয়ে সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে কিভাবে একটি বিশ্বমানের প্রতিষ্ঠান গড়েতোলা যায়, তার একটি উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত তাঁরা স্থাপন করেছেন এই বিশেষ প্রতিষ্ঠানটিরমধ্য দিয়ে। বিশ্বেরবিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের সদস্যদের সঙ্গে আমি গত সাড়ে তিনবছর ধরে নানাভাবে আলোচনায় মিলিত হয়েছি। আমি অনুভব করেছি যে তাঁদের সকলের মধ্যেইরয়েছেভারতের জন্য কিছু করার এক অদম্য স্পৃহা ও বাসনা। এই প্রতিষ্ঠানটি গড়ে তোলারমাধ্যমে রমেশজি এবং সুনীলজি এক উজ্জ্বল ও সমৃদ্ধ ভারতের ভবিষ্যতের স্বপ্নের সঙ্গেতাঁদের এই সদিচ্ছার এক বিশেষ মেলবন্ধন সম্ভব করে তুলেছেন। এই ঘটনার মধ্য দিয়েতাঁরা এমন এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন যা বিশেষ প্রশংসার দাবি রাখে। বন্ধুগণ,ভারত বর্তমানে বিশ্বের দ্রুততম গতিতে বিকাশশীল একটি অর্থনীতির দেশ। কৃষি থেকেআকাশপথ এবং মহাকাশ থেকে পরিষেবা – সবক’টি ক্ষেত্রেই আমরা প্রযুক্তির প্রয়োগ সম্ভবকরে তুলছি এক অবিশ্বাস্য দক্ষতায়। ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগ থেকে শুরু করে বড় বড়বিনিয়োগ – সর্বত্রই আমরা লক্ষ্য করেছি এক বিশেষ শিল্পোদ্যোগের জোয়ার। বন্ধুগণ,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স এবং বোট্‌স ও রোবট্‌স-এরউদ্ভাবনের সঙ্গে সঙ্গে আমাদেরউৎপাদনশীলতা সংশয়াতীতভাবেই বহুলাংশে বৃদ্ধি পাবে। এই ভয়-ভীতি কিন্তু নতুন বা নিতান্ত অমূলক নয়। প্রযুক্তিউদ্ভাবন প্রচেষ্টার প্রতিটি পর্যায়ে এই ধরনের সংশয় ও প্রশ্নের আমরা সম্মুখীনহয়েছি। এর পথ ধরে ভবিষ্যৎ সম্পর্কে গড়ে উঠেছে দুটি পৃথকপৃথক চিন্তাভাবনা। প্রথমটিহল আশা-আকাঙ্ক্ষার এবং দ্বিতীয়টি বাধা-বিঘ্নের ভীতির। বিকাশ বাউন্নয়নের নতুন নতুন ক্ষেত্রের দ্বার উন্মোচন করে প্রযুক্তি। একইসঙ্গে, তা খুলে দেয়নতুন সুযোগ-সুবিধার দ্বারগুলিও। নতুন প্রযুক্তির পথ ধরে সৃষ্টি হয় নতুন নতুনসুযোগ-সুবিধার। এর তাৎপর্য হল এই যে, সত্যানুসন্ধানের মধ্যেই নিহিত রয়েছেবৈজ্ঞানিক অনুসন্ধিৎসার আগ্রহ। আর্টিফিশিয়ালইন্টেলিজেন্স-এর আগামীদিনের ভবিষ্যৎ নির্ভর করছে মানুষের ইচ্ছা ও আগ্রহের ওপর। উন্নয়ন সম্পর্কে এই মতাদর্শই সকল মানুষের মধ্যে সমতার জন্ম দিতেপারে। প্রযুক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার সম্পর্কে সমাজের মধ্যে বৈষম্য ও পার্থক্য কখনই প্রযুক্তিরঅগ্রগতি সম্ভব করে তুলতে পারে না। ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ – এই নীতি ওচিন্তাভাবনার মধ্যেই নিহিত রয়েছে প্রযুক্তি উদ্ভাবনের চাবিকাঠি। বন্ধুগণ,আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর সূত্র ধরেই বহু সমস্যারই সমাধান আমরা করে ফেলতে পারিবড় বড় পরিসংখ্যান এবং মানুষের বোঝাপড়ার মধ্য দিয়ে। আমাদের এইভারতে এবং ভারতের জন্যই আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স গড়ে তোলার আমি আহ্বান জানাই। ভারতেপ্রধান প্রধান সমস্যার সমাধানে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স কোন কোন দিক দিয়ে আমাদেরসাহায্য করতে পারে তা চিহ্নিত করতে আমি আহ্বান জানাব আপনাদের সকলের কাছে। আমাদেরদেশ হল বিশেষভাবে বৈচিত্র্যময় যেখানে বহু ভাষা ও উপ-ভাষার সমাহার ঘটেছে। আমরা কিপারি না আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-কে এমন এক পর্যায়ে নিয়ে যেতে যেখানে এই ভাষাএবং উপ-ভাষার সাহায্যে আমরা পরস্পরের মধ্যে যোগাযোগ ও আলাপ-আলোচনাকে আরও সহজ করেতুলতে পারি? আর্টিফিশিয়ালইন্টেলিজেন্স এবং রোবোটিক্স তাঁদের ক্ষমতাকে বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে যাতে তাঁদেরপ্রকৃত সম্ভাবনার বিকাশ ঘটে বিভিন্ন কর্মপ্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে। শিক্ষক এবংআর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স মিলিতভাবে ছাত্র-শিক্ষক অনুপাতের মধ্যে যে ব্যবধানরয়েছে, তা ঘুচিয়ে ফেলতে পারে। আর এইভাবেই ছাত্রছাত্রীদের কাছে গুণগত শিক্ষাকে আমরাপৌঁছে দিতে পারি। আর্টিফিশিয়ালইন্টেলিজেন্স-এর সাহায্যে স্বাস্থ্য পরিষেবার সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের দক্ষতা ওক্ষমতা বৃদ্ধির মাধ্যমে দেশের প্রতিটি প্রান্তে উন্নতমানের স্বাস্থ্য পরিচর্যারসুযোগ আমরা পৌঁছে দিতে পারি। এমনকি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয় সম্পর্কে আগামপূর্বাভাস দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-এর। মানব শরীরেরগুরুতর অসুস্থতা ও রোগ-ব্যাধি নির্ণয়ের জন্যও আমরা কি পারি না আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-কেব্যবহার করতে? জলহাওয়া, শস্যোৎপাদন এবং বীজ বপনের সঠিক সময় সম্পর্কে আর্টিফিশিয়ালইন্টেলিজেন্স কি তথ্য পৌঁছে দিতে পারে না দেশের কৃষিজীবী মানুষের কাছে? বন্ধুগণ,আমাদের সরকার এমনই এক গভীর বিশ্বাসের ওপর নির্ভরশীল যে একুশ শতকের এই বিশেষশক্তিকে কাজে লাগিয়ে দারিদ্র্য এবং রোগমুক্তির কাজে প্রযুক্তির ব্যবহারকে আমরাসম্ভব করে তুলতে পারি। এর মধ্য দিয়ে দেশের দরিদ্র এবং অবহেলিত মানুষদের জন্যসমৃদ্ধি আমরা সম্ভব করে তুলতে পারি। ভারত নেট-এর আওতায় দেশের গ্রামগুলিতেআমরা পৌঁছে দিচ্ছি ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট সংযোগ। এই ডিজিটাল পরিকাঠামোই হল পরিষেবাপ্রদান এবং উদ্ভাবন প্রচেষ্টার তথ্যপ্রযুক্তিগত সমাধানের মূল স্তম্ভ। কেন্দ্রীয়সরকারের জাতীয় দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচির লক্ষ্য হল এমন এক দক্ষ শ্রমশক্তি গড়ে তোলাযেখানে পরবর্তী কয়েক দশকের উপযোগী কর্মশক্তির যোগান দেওয়া সম্ভব। শিল্পোদ্যোগ ওউদ্ভাবন সংস্কৃতির প্রসারে আমরা সূচনা করেছি ‘অটল উদ্ভাবন মিশন’-এর। বিশেষভাবেপ্রযুক্তিচালিত ক্ষেত্রগুলিতে বিশ্বমানের উদ্ভাবনকেন্দ্র গড়ে তোলা, স্টার্ট আপবাণিজ্যিক প্রচেষ্টার প্রসার, স্বনির্ভর কর্মসংস্থান কর্মসূচিকে জোরদার করে তোলাসহ অন্যান্য প্রধান প্রধান সমস্যাগুলির সমাধানই হল এর মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। ‘অটলউদ্ভাবন মিশন’-এর আওতায় বিভিন্ন স্কুলে স্থাপন করা হয়েছে ‘অটল টিঙ্কারিং ল্যাব্‌স’।ভারতের অন্তত ১০ লক্ষ কিশোর ও তরুণকে ভবিষ্যতের তরুণ উদ্ভাবক রূপে গড়ে তোলাই এরউদ্দেশ্য। এই পদক্ষেপগুলির মধ্য দিয়ে নতুন নতুন প্রযুক্তিগুলির সঙ্গে তাল মিলিয়েচলাই আমাদের লক্ষ্য যাতে তা দেশবাসীর কল্যাণে ব্যবহার করা যায়। বন্ধুগণ,আমি নিশ্চিতভাবেই বিশ্বাস করি যে এই প্রতিষ্ঠানের বিজ্ঞানী, গবেষক এবং পথিকৃৎরাভারতের সাধারণ মানুষের স্বার্থকে বিশেষভাবে প্রাধান্য দেবেন তাঁদের কর্মপ্রচেষ্টারমধ্যে। তাঁদের এই উদ্যোগ ও প্রচেষ্টার সাফল্যের জন্য আমি শুভেচ্ছা জানাই। সাধারণমানুষের কল্যাণে আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স-কে কিভাবে নিরাপদে এবং দায়িত্বশীলতারসঙ্গে ব্যবহার করা যায়, তা বিশ্ব সমক্ষে তুলে ধরার মতো একটি নির্দিষ্ট স্থানে ভারতযে গিয়ে পৌঁছবে, এ সম্পর্কে আমি বিশেষভাবে আশাবাদী। চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয় স্পেনে এ বছরের ৩০ মে তারিখে। প্রসঙ্গতউল্লেখ্য, পারস্পরিক কল্যাণে নতুন এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি সম্পর্কিতবিষয়গুলিতে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রসারের মাধ্যমে এক শক্তিশালী প্রাতিষ্ঠানিকসম্পর্ক গড়ে তোলার লক্ষ্য রয়েছে ভারত ও স্পেন – দুটি দেশেরই। কেন্দ্রীয় পরিবেশ, অরণ্য ও জলবায়ু পরিবর্তন প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীনদায়িত্বপ্রাপ্ত) শ্রী অনিল মাধব দাভে’রআকস্মিক প্রয়াণে গভীর শোক প্রকাশ করেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। শ্রী অনিল মাধব দাভে’র জন্ম মধ্যপ্রদেশেরউজ্জয়িনীতে ১৯৫৬ সালের ৬ জুলাই তারিখে। ইন্দোরের গুজরাটি কলেজে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিলাভের পর তিনি বিশেষভাবে যুক্ত ছিলেন পল্লী উন্নয়ন ও পরিচালন তথা ব্যবস্থাপনাসম্পর্কিত পঠন-পাঠনের মধ্যে। নদী সংরক্ষণ, পরিবেশ সুরক্ষা এবং সমাজসেবামূলক কাজেরপ্রতি তাঁর গভীর আগ্রহ ছিল। হিন্দি এবং ইংরেজি’তে কয়েকটি গ্রন্থ রচনার মাধ্যমেএকজন লেখক হিসাবেও তিনি খ্যাতি অর্জন করেন। জনঅভিযান পরিষদ নামে একটি সংস্থারপ্রতিষ্ঠাতা পুরুষ শ্রী দাভে সম্পাদনা করেছিলেন ‘চরৈবেতি’ নামে একটি মাসিকপত্রিকারও। শ্রী দাভে ছিলেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত একজন বিমান চালক, যিনি নর্মদার ওপরদিয়ে সেসনা ১৭৩ বিমাটি চালানোর কৃতিত্ব অর্জন করেছিলেন। ছত্রপতি শিবাজীর ওপর ‘জনতারাজা’ নামে একটি নাটক মঞ্চস্থ করারও ব্যবস্থা করেন তিনি, যা লন্ডনের ওয়েম্বলি সহবিভিন্ন মঞ্চে প্রায় এক হাজার বার অভিনীত হয়। শ্রী দাভে রাজ্যসভায় নির্বাচিত হন ২০০৯ সালে।জলসম্পদ সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সঙ্গে তিনি যেমন যুক্ত ছিলেন, তেমনই আবার সদস্যপদঅলঙ্কৃত করেছিলেন তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের পরামর্শদাতা কমিটিতে। বিশ্ব উষ্ণায়নএবং জলবায়ু পরিবর্তনের সংসদীয় মঞ্চেও তিনি ছিলেন একজন সক্রিয় সদস্য। নয়াদিল্লি, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ অ্যারো ইন্ডিয়া, ২০১৫`তে অংশ নিতে ভারত সফররত ইজরায়েলের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী মোশে ইয়ালন আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সৌজন্যমূলক সাক্ষাৎ করেন। বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে চলতি সহযোগিতার বিষয়টিতেও প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই শোকের মুহূর্তেতাঁর পরিবার-পরিজনদের মতো আমিও সমান উদ্বিগ্ন। এছাড়া, সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি জাতীয় বায়ুশক্তি প্রতিষ্ঠানের উদ্যোগে স্বচ্ছভাবে পরিচালিত হবে। সারা বিশ্বে বায়ুশক্তিকে সবচেয়ে উন্নত ব্যয়সাশ্রয়ী পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি প্রযুক্তিগুলির অন্যতম বলে ক্রমবর্ধমান বিদ্যুত চাহিদা ধারাবাহিকভাবে মেটানোয় সক্ষম বলে মেনে নেওয়া হয়েছে। ইতিমধ্যেই উপকূলবর্তী বায়ুশক্তি প্রযুক্তিগুলি এমন একটা পর্যায়ে পৌঁছে গেছে, যেখানে বিরাট আকারে নিযুক্তির প্রয়োজন আর সেজন্যই ভারত অফশোর বায়ুশক্তিকে সদ্ব্যবহারের প্রচেষ্টা শুরু করেছে। ব্যক্তিগত মালিকানাধীন পুনর্নিমাণ প্রকল্প। মূলত, ২০০১-এ গুজরাটে ভূমিকম্পের পর এই ভাবনার জন্ম। আর তারপর যখন শ্রীলঙ্কায় সুনামি হল, এ দেশ থেকে একটি উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধিদল গুজরাট গিয়েছিলেন। তাঁরা আমাদের পুনর্নিমাণগুলিকে সমীক্ষা করতে চেয়েছিলেন। গ্রামাঞ্চলে বাসস্থান নির্মাণে উৎসাহদানের লক্ষ্যে একটি নতুন কর্মসূচি আজ অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এই কর্মসূচির আওতায় গৃহীত ঋণের ওপর সুদে ভর্তুকি সহায়তা দেবে কেন্দ্রীয় সরকার। ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ)’-এর আওতার বাইরে নির্মিত গ্রামীণ বাসস্থানের ক্ষেত্রে এই ভর্তুকি সহায়তার সুযোগ পাওয়া যাবে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে গ্রামবাসীরা নতুন বাসস্থান নির্মাণ কিংবা বর্তমানেরবাসস্থানটি একটি পাকা বাড়ি রূপে গড়ে তুলতে পারবেন। এজন্য যাঁরা ঋণ গ্রহণ করবেন,তাঁদের ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত গৃহীত ঋণের ক্ষেত্রে সরকারি ভর্তুকির সুযোগসম্প্রসারিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাশিয়া সফরে যাচ্ছেন। যাত্রার প্রাক্কালে এক বিবৃতিতে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন : ২০০১-এর একটি ঘটনা আমার মনে পড়ছে। বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, খনিজ অনুসন্ধান সহ অন্যান্য ক্ষেত্রগুলিতেও আমরা আমাদের সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে চাই। আমার এই সফরকালে প্রেসিডেন্ট পুতিনের সঙ্গে আমার আলোচনা হবে সুদূরপ্রসারী। রাশিয়ার বাণিজ্য প্রতিনিধিদের সঙ্গেও আমি কথাবার্তা বলব এবং তাদের আমন্ত্রণ জানাব ভারতে বিনিয়োগ করার জন্য। ‘ভারতের বন্ধুরা’ কর্মসূচিতেও আমি উপস্থিত থাকব। সিঙ্গাপুরেরউপ-প্রধানমন্ত্রী মিঃ থরম্যান সন্মুগরত্নম শনিবার এখানে সাক্ষাৎ করলেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ২০১৬’রঅক্টোবরে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রী মিঃ লি শিয়েন লুঙ্গের সফল ভারত সফরেরস্মৃতিচারণা প্রসঙ্গে শীর্ষ বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের পরিপ্রেক্ষিতে দু’দেশেরপদক্ষেপ গ্রহণের ঘটনার সপ্রশংস উল্লেখ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বিনিয়োগ,নগরোন্নয়ন, অসামরিক বিমান পরিবহণ এবং দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রে নিবিড় দ্বিপাক্ষিকসহযোগিতার বিশেষ প্রশংসা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আমাদের প্রতিবেশী দেশগুলির ক্রীড়াবিদদের এবং দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক সহযোগিতা সমিতি, সার্ক-এর দেশগুলির ভাই ও বোনেদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে আমার নিজেকে অত্যন্ত ভাগ্যবান এবং সম্মানিত মনে করছি। আমি আপনাদের ‘অতিথি দেবো ভবঃ’ সংস্কৃতির জন্য পরিচিত দেশ ভারতে তথা আতিথেয়তা ও ক্রীড়া প্রীতির জন্য পরিচিত এই সুন্দর শহর গুয়াহাটিতে সবাইকে স্বাগত জানাই। ব্রহ্মপুত্র নদের তীরে এই গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিক খেলাধূলার আসরে উত্তেজনা এবং উৎসাহে ভরপুর, আপনাদের মতো মানুষের চমকপ্রদ উপস্থিতি আমাকে আজ দারুণভাবে নাড়া দিচ্ছে। প্রাচীন ভারতের প্রাগজ্যোতিষপুরের সময় থেকে গুয়াহাটি বর্তমানে অনেক দূর এগিয়ে গিয়েছে। উত্তর-পূর্বাঞ্চলের যুবসম্প্রদায়, বিশেষ করে, এই অসমের যুবকেরা ভালো ফুটবল ম্যাচ দেখার কোন সুযোগ ছাড়তে চায় না। এদের এই ক্রীড়া প্রীতির খ্যাতি এতদূর ছড়িয়েছে, যে ২০১৭ সালে, এই প্রথম ভারতে অনুষ্ঠেয় অনুর্ধ্ব ১৭ ফুটবল বিশ্বকাপের জন্য, বিশ্ব ফুটবল সংস্থা ফিফা, গুয়াহাটিকে এর প্রধান অনুষ্ঠানস্থল হিসেবে বেছে নিয়েছে। এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা আমার কাছে প্রতিভা, দলগত উদ্যোগ এবং সমবেত প্রচেষ্টার এক তাৎপর্যপূর্ণ ব্যাঞ্জনা নিয়ে হাজির হয়েছে। আমাদের মধ্যে এখন দক্ষিণ এশিয়ার শ্রেষ্ঠ যুব ক্রীড়া প্রতিভারা হাজির হয়েছেন। আপনারা প্রত্যেকেই আপনাদের দলের গর্বিত সদস্য – সে দল খেলাধূলারই হোক অথবা যে দেশকে আপনি প্রতিনিধিত্ব করছেন ব্যাপক অর্থে সেই দলেরও সদস্য। একইসঙ্গে এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতা সমস্ত দক্ষিণ এশীয় দেশের ঐক্যের এক সমারোহ। আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা – এগুলির মধ্যে যে দেশেরই মানুষ আপনি হোন না কেন, আমরা সবাই নিজেদেরকে দক্ষিণ এশিয়ার মানুষ বলে ভাবি। খেলাধূলাকে ব্যক্তি জীবনের এক অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অঙ্গ হিসেবে ভাবা দরকার। যেকোন ভালো খেলাধূলা একদিকে যেমন স্বাস্থ্যের পক্ষে উপকারী, অন্যদিকে তাতে অংশগ্রহণ করলে মনও ভালো হয়ে যায়। সেই অর্থে বলা যায় খেলা ছাড়া, খেলোয়াড়োচিত মানসিকতা তৈরি হওয়া সম্ভব নয়। এই মানসিকতা শুধু যে আপনাকে খেলার মাঠে এগিয়ে নিয়ে যাবে তাই নয়, জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রেও তা আপনার পক্ষে সহায়ক ভূমিকা নেবে। আপনি খেলার মাঠে যা শিখবেন, সারা জীবন ধরে সেই আনন্দময় স্মৃতি আপনার সঙ্গে থাকবে। তাই আমি সবসময়ই বলি –“যো খেলে, ও খিলে”। যে মানুষ খেলাধূলা করে, সেই জীবনে উন্নতি করে। এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত প্রতীক ‘তিখোর’ হচ্ছে এক গণ্ডার শিশু, যে অত্যন্ত বুদ্ধিমান এবং ক্ষিপ্র। এই প্রতীক খেলাধূলার সঙ্গে জড়িত মানুষ এবং ক্রীড়াপ্রেমীদের মানসিকতার পরিচায়ক। এই প্রতিযোগিতার জন্য নির্বাচিত ‘থিম সং’ বা মূল গানটি –“এই পৃথিবী এখন ক্রীড়াঙ্গণ, ক্রীড়া হল শান্তির প্রাঙ্গণ” গেয়েছেন কিংবদন্তী গায়ক প্রয়াত ডঃ ভুপেন হাজারিকা। এই গায়কের অসাধারণ কন্ঠ মানুষকে তীব্রভাবে আকর্ষণ করে। তাঁর গানে দক্ষিণ এশীয় ক্রীড়ার মূল সুরটিকে অত্যন্ত সুন্দরভাবে ধরা হয়েছে, যাতে আছে শান্তি, মৈত্রী এবং উন্নয়নের বার্তা। ডঃ ভুপেন হাজারিকার আরেকটি বিখ্যাত গান –“উই আর ইন দ্য সেম বোট ব্রাদার” যা আপনারা কিছুক্ষণের মধ্যে শুনতে পাবেন তাও কিন্তু দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলিকে নিয়েই। সত্যিই, এক পরিবার হিসেবে আমাদের একসঙ্গে হাত ধরে এগিয়ে চলা দরকার। আসুন, দক্ষিণ এশীয় ক্রীড়ার এই আসরের মাধ্যমে মৈত্রীর সেই ভাবনাকে জাগরিত করে তুলি। দক্ষিণ এশিয়ার জন্য আমার ভাবনাচিন্তা, ভারতের জন্য আমার ভাবনার মতোই – সবকা সাথ, সবকা বিকাশ। দক্ষিণ এশিয়ার সবক’টি দেশ উন্নয়নের লক্ষ্যে আমাদের যাত্রাপথের সঙ্গী। আমি একথা নিশ্চিতভাবে বলতে পারি, খেলাধূলার উদ্যোগ যেমন এগিয়ে যাবে, মৈত্রী, বিশ্বাস এবং সমঝদারিত্বের এই ভাবনা শুধুমাত্র যে খেলাধূলার অঙ্গণেই দেখা যাবে তাই নয়, বাণিজ্য এবং পর্যটনের ক্ষেত্রেও এর প্রভাব পড়বে। খেলাধূলার এই বিখ্যাত আসর যেন, বাণিজ্য, পারস্পরিক সহযোগিতা এবং খেলাধূলার মধ্য দিয়ে এই অঞ্চলে শান্তি এবং বিকাশের এক সূচনাকেন্দ্র হয়ে ওঠে। এই আসর যেন সার্কভুক্ত দেশগুলির মানুষের নিজেদের সম্ভাবনাকে আবিষ্কার করার এক সুযোগ এনে দেয়। খেলোয়াড়োচিত মানসিকতা আসলে জীবনের এমন এক দর্শন, যা সহ্যশক্তি, মানসিক ক্ষমতার এক সুষম বিকাশ ঘটায়। ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় সাফল্যের চ্যালেঞ্জ, উদ্যোগের আনন্দ, সাফল্যের উচ্ছ্বাস, বন্ধুত্বের মানসিকতা এবং খেলার আসরে সদাচার একটি দেশের সংস্কৃতি, শিক্ষা, নৈতিকতা, মর্যাদা এবং সামাজিক রীতিনীতিরও পরিচয় দেয়। একমাত্র, এই খেলার আসরেই আমরা ভুলে যেতে পারি আমাদের মধ্যেকার বিভেদের প্রাচীরকে এবং খেলোয়াড়োচিত মানসিকতার মাধ্যমেই আমরা একে অপরের সঙ্গে সংযোগ গড়ে তুলতে সক্ষম হই। আমরা আমাদের বৈচিত্র্যে গর্বিত হতে পারি, কিন্তু একইসঙ্গে খেলাধূলার সাধারণ নিয়ম ও সততা এবং সদাচারের মূল্যবোধের ক্ষেত্রে ঐক্যবদ্ধ থাকি। আগামী ১২ দিন ধরে, যে বন্ধুত্ব আপনাদের মধ্যে গড়ে উঠবে সেই সুখস্মৃতি আপনারা সারা জীবন মনে রাখবেন। আমি নিশ্চিত, এই মৈত্রীর আদর্শকে আপনারা মনে রাখবেন এবং আমাদের দেশগুলির মধ্যে শান্তি এবং মৈত্রীর দূত হয়ে উঠবেন। খেলার এই আসরে যখন খেলোয়াড়রা পদক জয়ের জন্য একে অপরের সঙ্গে কঠিন প্রতিযোগিতায় লিপ্ত হবেন তার বাইরেও আমি সমস্ত খেলোয়াড় এবং আগত দর্শকদের তাঁদের ব্যস্ত সময়ের মধ্য থেকে কিছু সময় বের করে এই অঞ্চলের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটন কেন্দ্র এবং নিকটবর্তী অভয়ারণ্যগুলিকে দেখে আসার জন্য অনুরোধ জানাই। আরও একবার দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলির বন্ধুদের আমি স্বাগত জানাই। আসুন, এই প্রতিযোগিতাকে প্রকৃত অর্থে খেলোয়াড়োচিত মানসিকতার এক প্রদর্শনী করে তুলি। সবার সেরা খেলোয়াড় যেন জয়লাভ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ৩০ সেপ্টেম্বর গুজরাট সফর করবেন। গুজরাটের আনন্দে প্রধানমন্ত্রী একটি আধুনিক খাদ্য প্রক্রিয়াকরণকেন্দ্র সহ আমুলের একটি অত্যাধুনিক চকোলেট কারখানার উদ্বোধন করবেন। আনন্দ ও খটরাজে তিনি আমূল উৎপাদন কেন্দ্রের সম্প্রসারণের শিলান্যাস করবেন। এছাড়াও, এক জনসভায় তিনি ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী এরপর অঞ্জার সফর করবেন। তিনি সেখানে মুন্দ্রা এলএনজি টার্মিনাল, আঞ্জার মুন্দ্রা পাইপলাইন উদ্বোধন করবেন। এই উপলক্ষে এক জনসভাতেও ভাষন দেবেন তিনি। এই সংগ্রহালয়টি গান্ধী দর্শন, তাঁর মূল্যবোধে এবং দর্শন সম্বন্ধে সচেতনতা প্রসারের কাজ করবে। এরপর, প্রধানমন্ত্রী ৬২৪টি বাড়ির একটি সরকারি আবাসন প্রকল্পের সূচনা করবেন। এছাড়াও, তিনি ২৪০টি উপকৃত পরিবারের ‘ই-গৃহ প্রবেশ’ অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করবেন। “বিশ্বউপভোক্তা দিবসে আমি সম্মান জানাই সেই সমস্ত ক্রেতা সাধারণকে যাঁদের ক্রয় ক্ষমতারওপর নির্ভর করে রয়েছে দেশের সার্বিক অর্থনীতি। গ্রাহকও ক্রেতা সাধারণের অধিকার সুরক্ষায় এবং তাঁদের অভিযোগ নিরসনে বেশ কিছু উদ্যোগ ওকর্মসূচি গ্রহণ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। একই সঙ্গে, দেশের সর্বস্তরের মানুষেরস্বার্থকে সুরক্ষিত রাখার কথাও চিন্তা করা হয়েছে ভারতের অবস্থান এবং মন্ত্রিসভারঅনুমোদনের মধ্যে। ভারতীয় সংবিধানের রূপকার বাবা সাহেব আম্বেদকরের ১২৫তম জন্মবার্ষিকীতে ‘গ্রামোদয় থেকে ভারত উদয়’ অভিযানের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বাবা সাহেব আম্বেদকরের জন্মস্থান মহু-তে গিয়ে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন প্রধানমন্ত্রী। বাবা সাহেবের প্রতিমূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্যও অর্পণ করেন প্রধানমন্ত্রী। ঐ গ্রামেই পরে এক জনসভায় ‘গ্রামোদয় থেকে ভারত উদয়’ অভিযানের সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজকের এই বিশেষ দিনটিতে মহু-তে আসতে পেরে তিনি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছেন। সমাজে অন্যায় ও অবিচারের বিরুদ্ধে ডঃ আম্বেদকরের জেহাদ ও সংগ্রামের কথাও স্মরণ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সকল মানুষের মধ্যে সমতা ও মর্যাদার দাবিতে সারা জীবন আন্দোলন করে গেছেন বাবা সাহেব আম্বেদকর। ‘গ্রামোদয় থেকে ভারত উদয়’ অভিযানের সূচনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এ বছর ১৪ থেকে ২৪ এপ্রিল পর্যন্ত গ্রামোন্নয়নের কাজে বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া হবে। এ বছরের কেন্দ্রীয় বাজেট দেশের গ্রামাঞ্চল ও কৃষিজীবী মানুষের কল্যাণে উৎসর্গ করা হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী বলেন, উন্নয়নপ্রচেষ্টায় পল্লী উন্নয়নের ওপর সবসময়ই বিশেষ দৃষ্টি দেওয়া প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গ্রামগুলির মধ্যে ডিজিটাল সংযোগ গড়ে তোলা একান্ত জরুরি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে ভারত ও অ্যাঙ্গোলার মধ্যে ইলেট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতা বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। কেন্দ্রীয় ইলেট্রনিক্স এবং তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রককে, এই ক্ষেত্রে নতুন নতুন বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির জন্য বলা হয়েছে। এরই প্রেক্ষিতে মন্ত্রক বিভিন্ন দেশের সংশ্লিষ্ট সংগঠন/এজেন্সিগুলির সঙ্গে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং তথ্য আদান-প্রদানের লক্ষ্যে একাধিক সমঝোতা ও চুক্তিতে আবদ্ধ হয়েছে। বিভিন্ন দেশের মাননীয় মন্ত্রী ও ভদ্র মহোদয়গণ, অংশীদার দেশ, কর্পোরেট জগতের প্রতিনিধিবৃন্দ, আমন্ত্রিত ও অংশগ্রহণকারী অতিথিগণ, মঞ্চে উপবিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বন্ধুগণ, ভদ্র মহোদয় ও ভদ্র মহোদয়াগণ! নবম ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলনে আপনাদের স্বাগত জানাতে পেরে আমি আননিদত। আপনারা দেখতে পাচ্ছেন যে, এই সম্মেলন প্রকৃতপক্ষেই এক গ্লোবাল ইভেন্টে পরিণত হয়েছে। ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলন আমাদের শিল্পোদ্যোগীদের আস্থা বাড়াতে অবদান যুগিয়েছে। দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি, এই সম্মেলন বিশ্বের সেরা পন্থা-পদ্ধতিগুলি গ্রহণ করার ক্ষেত্রেও সাহায্য করেছে। এবারের ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলনে অংশীদার ১৫টি দেশকে আমি বিশেষভাবে স্বাগত ও ধন্যবাদ জানাই। বিভিন্ন বিষয়ের ওপর একাধিক সভা-সম্মেলন আয়জন করা হয়েছে। একাধিক রাষ্ট্র ও সরকার প্রধান ছাড়াও বহু বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দের উপস্থিতিতে আমরা সম্মানিত। এক সঙ্গে এত বিশিষ্ট মানুষের সমবেত হওয়ার বিষয়টি জাতীয় রাজধানীর মধ্যেই নয়, রাজ্য রাজধানীগুলিতেও দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রসারিত কয়েছে। অধিকাংশ উদীয়মান অর্থনীতির মতো ভারতেও মূল চ্যালেঞ্জ হ’ল সমান্তরাল বিকাশ হার বজায় রাখা। উন্নয়নের নিরিখে যে অঞ্চল ও সম্প্রদায়গুলি পিছিয়ে রয়েছে, সেখানে উন্নয়নের সুফল আমাদের সমান্তরালভাবে পৌঁছে দিতে হবে। আমার সরকারের মন্ত্রই হ’ল – সংস্কার, কর্মসম্পাদন, রূপান্তর এবং আরও বেশি সংস্কার। আমরা বেশ কয়েকটি কঠোর সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। কাঠামোগত সংস্কারের লক্ষ্যে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির ফলে আমাদের অর্থনীতি ও দেশ আরও মজবুত হয়েছে। আমরা যে সংস্কারমূলক উদ্যোগ গ্রহণ করেছি, তার ফলে আমরা বিশ্বের অন্যতম প্রধান দ্রুত বিকাশশীল দেশ হয়ে উঠেছি। বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডারের মতো অগ্রণী আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলির পাশাপাশি, বিশ্বখ্যাত মুডিস্‌ – এর মতো রেটিং সংস্থাগুলি ভারতের আর্থিক অগ্রগতিতে আস্থা প্রকাশ করেছে। আমরা সেই সমস্ত বাধা-বিপত্তিগুলি দূর করার ওপর গুরুত্ব দিয়েছি, যেগুলি পূর্ণ সম্ভাবনার বিকাশের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। আমরা সংস্কার ও বিনিয়ন্ত্রণের গতি-প্রকৃতি অব্যাহত রাখব। বিগত চার বছরে বিশ্ব ব্যাঙ্কের অনুকূল ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশ সংক্রান্ত প্রতিবেদনে বিশ্ব ক্রমতালিকায় ভারত ৬৫ ধাপ উঠে এসেছে। কর ব্যবস্থার সরলীকরণ ও সমগ্র প্রক্রিয়াকে আরও সুদৃঢ় করতে ঐতিহাসিক পণ্য ও পরিষেবা কর সহ একাধিক ব্যবস্থার রূপায়ণের ফলে লেনদেন খরচ কমেছে এবং কর ব্যবস্থা আরও কার্যকর হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল প্রক্রিয়া, অনলাইন লেনদেন ও একক অনুমোদন ব্যবস্থার মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্যের জন্য দ্রুত অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলা হয়েছে। প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের দিক থেকে আমরা এখন এক উদার দেশে পরিণত হয়েছি। আমাদের অর্থনীতির অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এখন প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। বৈদেশিক বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ৯০ শতাংশের বেশি লগ্নিতে সরাসরি অনুমতি দেওয়া হয়েছে। এই সিদ্ধান্ত আমাদের অর্থনীতিকে এক উচ্চগতির পথে চালিত করেছে। এই বিষয়গুলিকে বিবেচনায় রেখে আমি সুস্পষ্টভাবে একথা বলতে পারি যে, আমাদের সঙ্গে বাণিজ্যিক লেনদেনের সুযোগ-সুবিধা বিপুল। বিগত দুই বছরে আমরা কর্পোরেট ক্ষেত্রগুলির জন্য কর হার কমিয়েছি। আমাদের যুবসম্প্রদায়ের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টিতে উৎপাদন ক্ষেত্রের প্রসারে আমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগে ডিজিটাল ইন্ডিয়া ও স্কিল ইন্ডিয়ার মতো কর্মসূচিগুলি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সহায়ক ভূমিকা নিয়েছে। এখন আমাদের উদ্দেশ্য হ’ল – বিশ্বের শ্রেষ্ঠ পন্থা-পদ্ধতিগুলিকে অনুসরণ করে ভারতকে উৎপাদন ক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যতম কেন্দ্রে পরিণত করা। পরিচ্ছন্ন শক্তি ও পরিবেশ-বান্ধব উন্নয়ন। জলবায়ু পরিবর্তনগত প্রভাব হ্রাস করার লক্ষ্যে একযোগে কাজ করতে আমরা দায়বদ্ধ। শক্তি উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বে আমরা পঞ্চম বৃহত্তম পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদক দেশ। এছাড়াও, বায়ুশক্তি উৎপাদনের দিক থেকে বিশ্বে আমাদের স্থান চতুর্থ এবং সৌরশক্তিতে আমরা বিশ্বে পঞ্চম। সড়ক, বন্দর, রেল, বিমানবন্দর, টেলিযোগাযোগ, ডিজিটাল নেটওয়ার্ক ও শক্তি ক্ষেত্র সহ পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামো ক্ষেত্রে বিনিয়োগ বাড়াতে আমরা আগ্রহী। প্রচুর সংখ্যায় এলইডুই বাল্ব বিতরণ করা হয়েছে। সড়ক নির্মাণের গতি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। দেশের প্রধান বন্দরগুলির পণ্য পরিবহণ ক্ষমতা অপ্রত্যাশিতভাবে বেড়েছে। গ্রামীণ সড়ক যোগাযোগ ব্যবস্থার পরিধি বেড়ে হয়েছে ৯০ শতাংশ। নতুন রেল লাইন স্থাপন, গেজ রূপান্তরণ, রেল লাইন ডবল করা ও রেল লাইনে বৈদ্যুতিকীকরণের গতি দ্বিগুণ হয়েছে। আমরা বিশ্বাস করি, উন্নয়নের সুফল সহজ ও সুদক্ষ উপায়ে অবশ্যই সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছবে। এ প্রসঙ্গে উদাহরণ-স্বরূপ বলতে পারি, এখন প্রতিটি পরিবারে একটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট রয়েছে। আমরা ছোট শিল্প সংস্থাগুলিকে কোনও রকম বন্ধক ছাড়াই ঋণ সহায়তা দিচ্ছি। এখন দেশের প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ রয়েছে। প্রায় প্রতিটি পরিবারই বিদ্যুৎ সংযোগ পেয়েছে। অসংখ্য মানুষ যাঁদের রান্নার গ্যাস ক্রয়ের ক্ষমতা ছিল না, তাঁদের গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। শহর ও গ্রামাঞ্চলের সর্বত্র অনাময়তা সুনিশ্চিত করা হয়েছে। আধুনিক ও প্রতিযোগিতামুখী যে নতুন ভারতের উত্থান হচ্ছে, সেখানে সব মানুষের প্রতি গুরুত্ব ও পরিষেবার বিষয়টি অগ্রাধিকার পাচ্ছে। এই কর্মসূচির ফলে স্বাস্থ্য পরিকাঠামো, চিকিৎসার সাজসরঞ্জাম ও উপকরণ তথা স্বাস্থ্য পরিচর্যা পরিষেবার ক্ষেত্রে ব্যাপক বিনিয়োগের সুযোগ-সুবিধা তৈরি হবে। আমাদের ৫ কোটি গৃহ নির্মাণ করতে হবে। স্বাভাবিকভাবেই সড়ক, রেল ও জলপথ ক্ষেত্রে বিপুল বিনিয়োগের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আমাদের উদ্দেশ্যগুলি দ্রুত ও পরিবেশ-বান্ধব উপায়ে অর্জনের জন্য আমাদের প্রয়োজন বিশ্ব মানের প্রযুক্তি। বন্ধুগণ, ভারত এখন ব্যাপক সুযোগ-সুবিধাসম্পন্ন দেশ হয়ে উঠেছে। আপনাদের মধ্যে যাঁরা ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্যের সঙ্গে যুক্ত নন, তাঁদেরকে আমি এদেশে আসার এবং সুযোগ-সুবিধাগুলি খুঁজে বের করতে প্রেরণা দিই। আপনাদের অসংখ্য ধন্যবাদ। প্রগতির মাধ্যমে আজ এখানে কেন্দ্রীয় সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রকের কাজকর্ম সম্পর্কে সাধারণ মানুষের ক্ষোভ ও অভিযোগের বিষয়টি খতিয়ে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এ ব্যাপারে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণেরও তিনি নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্মী ও আধিকারিকদের। মিজোরাম, উত্তরাখান্ড, হিমাচল প্রদেশ, ওড়িশা, ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড়, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, চন্ডীগড় এবং দিল্লি সহ অন্যান্য কয়েকটি রাজ্যের রেল, সড়ক, বিদ্যুৎ এবং পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানি সম্পর্কিত পরিকাঠামো প্রসারের কাজটিও আজ প্রগতির মাধ্যমে খতিয়ে দেখেন তিনি। উত্তরাখন্ডের চারধামের মধ্যে সংযোগ গড়ে তোলার প্রকল্পটি পর্যালোচনার পর এ সম্পর্কিত প্রয়োজনীয় কাজ দ্রুত শেষ করারও নির্দেশ দেন তিনি। রেল স্টেশনগুলিকে ঢেলে সাজাতে যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে, সে সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতিটি রাজ্যে যাতে অন্তত একটি করে এ ধরণের প্রকল্পের কাজ শুরু করা যায়, সে সম্পর্কে কাজ ও চিন্তাভাবনার জন্য তিনি পরামর্শ দেন বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবদের। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রেল স্টেশনগুলি নতুনভাবে গড়ে তোলা হলে তা অর্থনৈতিক কর্মতৎপরতার এক একটি কেন্দ্র হয়ে উঠবে। বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যসচিবদের নিজের নিজের রাজ্যে সৌরবিদ্যুৎ প্রকল্পগুলির কাজ দ্রুত সম্পন্ন করার আর্জি জানান তিনি। এই উপলক্ষ্যে আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, সংস্কৃতি হচ্ছে যে কোন জাতির জীবনরুধির এবং এর মাধ্যমেই একটি জাতির নিজস্ব পরিচয়ের প্রতিফলন ঘটে। তিনি বলেন, ঔপনিবেশিক শোষন এবং বিদেশী আগ্রাসন সত্ত্বেও ভারতের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য সুরক্ষিত থেকেছে। গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং স্বামী বিবেকানন্দ মতো মানুষের অসামান্য অবদানের জন্যই এটা সম্ভব হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের সৃষ্টির মধ্যে ভারতের বহুমাত্রিক ঐতিহ্যের প্রতিফলন ঘটেছে। রবীন্দ্র সঙ্গীতের মধ্যে দেশের সব রঙ মিশে আছে এবং কোনও একটি ভাষায় সীমাবদ্ধ নেই। গুরুদেবের শিক্ষাকে তিনি সময় নিরপেক্ষ বলে বর্ণনা করেন এবং তাঁর সৃষ্টি থেকে সমগ্র বিশ্বের শিক্ষা নেওয়ার রয়েছে। ২০১২ সালে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের জন্মের সার্ধশতবর্ষ উপলক্ষে এই পুরস্কারের প্রবর্তন করা হয়। বার্ষিক এই পুরস্কারে প্রাপককে ১ কোটি টাকা, একটি শংসাপত্র, একটি ফলক এবং চিরাচরিত হস্তশিল্প অথবা হাতে বোনা তাঁতশিল্পের নিদর্শন পুরস্কার হিসাবে দেওয়া হয়। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ সড়ক যোজনা, আবাসন, কয়লা এবং বিদ্যুতের মতো মূলপরিকাঠামো ক্ষেত্রগুলির কাজের অগ্রগতি বৃহস্পতিবার পর্যালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রায় আড়াই ঘন্টার এই পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেনপ্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, নীতি আয়োগ এবং কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকাঠামো সম্পর্কিতমন্ত্রকগুলির শীর্ষ কর্তাব্যক্তিরা। নীতি আয়োগের সিইও’র উপস্থাপনায় জানা যায় যে, বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণক্ষেত্রে ইতিমধ্যেই উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি লক্ষ্য করা গেছে। ‘মেরি সড়ক অ্যাপ’ সম্পর্কে যে সমস্তঅভিযোগ পাওয়া গেছে, তার দ্রুত নিরসনে গৃহীত ব্যবস্থাদি সম্পর্কে শ্রী মোদীকে অবহিতকরেন সংশ্লিষ্ট আধিকারিকরা। এই সমস্ত অভিযোগগুলি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে বিশ্লেষণ করেপ্রতিকারমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের উপযোগী পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য তাঁদের পরামর্শ দেনপ্রধানমন্ত্রী। এদিন কয়লা ক্ষেত্রের কাজকর্ম সম্পর্কেও বিশেষ আগ্রহ দেখান প্রধানমন্ত্রী।আধুনিকতম প্রযুক্তি ব্যবহারের মাধ্যমে খনি সংক্রান্ত কাজকর্ম এবং কয়লা থেকে গ্যাসআহরণ প্রচেষ্টায় পূর্ণ উদ্যমে কাজ করে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি। ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে এক দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হলেন উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতি শ্রী শাভকত মীরজাওয়েভ। দুই নেতার মধ্যে বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী সেদেশের রাষ্ট্রপতি ও প্রতিনিধিদলকে গুজরাটে আসার জন্য উষ্ণ অভ্যর্থনা জানান। গত বছর ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে পয়লা অক্টোবর পর্যন্ত উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতির ভারত সফরের সময়ে দু’জনের মধ্যে বৈঠকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী, সেদেশের রাষ্ট্রপতির ভারত সফরের সময়ে গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের অগ্রগতি ও রূপায়ণে সন্তোষ প্রকাশ করেন। উজবেকিস্তানের আদিজান অঞ্চলের সঙ্গে গুজরাটের সহযোগিতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী আশা প্রকাশ করেন যে, রাষ্ট্রপতি মীরজাওয়েভের ঐ ভারত সফরের ফলে দু’দেশের পাশাপাশি, অঞ্চল-ভিত্তিক সম্পর্ক আরও মজবুত হবে। ভারতের ক্রমবর্ধমান শক্তি চাহিদা পূরণে দীর্ঘ মেয়াদী-ভিত্তিতে ইউরেনিয়াম সরবরাহের জন্য উজবেকিস্তানের নভৈ মিনারেলস্‌ অ্যান্ড মেটালার্জিক্যাল সংস্থা এবং ভারতের আনবিক শক্তি দপ্তরের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষর সম্পর্কিত নথিপত্র বিনিময় অনুষ্ঠানে দুই নেতাই উপস্থিত ছিলেন। ২০১৮ থেকে ২০২১ – এই চার বছরের মধ্যে আফ্রিকায় ১৮টি নতুন ভারতীয় মিশন স্থাপনেরপ্রস্তাবে আজ সম্মতি জানাল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের ফলে আফ্রিকা মহাদেশে ভারতের কূটনৈতিক দৌত্যেরপ্রসার ছাড়াও আফ্রিকার দেশগুলিতে বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের সঙ্গে যোগাযোগস্থাপনেরও বিশেষ সুবিধা হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও ব্রাজিলের মধ্যে হওয়া একটি সমঝোতাপত্রের বিষয়ে অবগত করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ আকাশবাণীর ডিজিটাল সিডি’র একটি সেট প্রকাশের মাধ্যমে রামচরিতমানস-এর ডিজিটাল সংস্করণের আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করলেন। এই সাঙ্গীতিক উপস্থাপনার নেপথ্যে থাকা শিল্পীদের অবদান ও প্রয়াসের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁরা যে শুধু সঙ্গীত সাধনা হিসেবেই এই কাজ করেছেন তা নয়, এটা ছিল তাঁদের কাছে সংস্কৃতি সাধনা ও সংস্কার সাধনার এক নিদর্শন। প্রধানমন্ত্রী দেশের মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করা, চেতনা ও তথ্য যোগানোর ক্ষেত্রে আকাশবাণীর ভূমিকার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তের নানা শিল্পীর মোট ৯ লক্ষ ঘন্টার রেকর্ডিং তাঁদের কাছে রয়েছে বলে আকাশবাণী তাঁকে জানিয়েছে। একে এক অমূল্য সংগ্রহ বলে অভিহিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভাবীকালের জন্য এর বিশদ নথিকরণ প্রয়োজন। তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী শ্রী অরুণ জেটলি এবং প্রসার ভারতীর চেয়ারম্যান শ্রী সূর্য প্রকাশও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি প্যারিসে সন্ত্রাসী হামলায় বহু লোকের জীবনহানিতে শোকজ্ঞাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বুধবার অনুমোদিত হল ভারত ও মোজাম্বিকের মধ্যে বিমান পরিষেবা চালু করার প্রস্তাবটি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পবিত্র ওনাম উৎসব উপলক্ষে কেরলের মানুষের সঙ্গে একাত্বতা প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বিগত কয়েকদিন ধরে কেরলের মানুষ যে প্রতিকূল পরিস্থিতির সম্মুখীন হয়েছেন, তা থেকে বেরিয়ে আসতে এবারের ওনাম উৎসব তাঁদেরকে শক্তি যোগাক। এক স্বচ্ছ আন্তর্জাতিক অর্থ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সফল প্রচেষ্টার জন্য জি-২০ সম্মেলনের আমি বিশেষ প্রশংসা করি। বিশ্ব অর্থনীতিতে এটি হল সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার লক্ষ্যে এক মঞ্চ বিশেষ। ভারতের সরকার এবং কেন্দ্রীয় ব্যাঙ্ক আর্থিক ও ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রগুলিকে আরও শক্তিশালী করে তুলতে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। জি-২০ সম্মেলনে এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে যখন আমরা চিন্তাভাবনা করছি তখন প্রাসঙ্গিক কয়েকটি তথ্যের অবতারণা আমি এখানে করতে চাই। আমাদের অবশ্যই মনে রাখতে হবে যে উন্নয়নশীল দেশগুলিতে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কিংবা ব্যাঙ্কগুলির কাজকর্মের উন্নয়নে প্রয়োজনীয় মূলধনের অভাব যেন প্রতিবন্ধকতা হয়ে না দাঁড়ায়। তবে, উন্নত প্রযুক্তির ব্যবহার এবং সুদক্ষ পরিচালন অবশ্যই মূলধনী চাহিদা হ্রাস করতে পারে। ব্যাঙ্ক পরিকাঠামোর সুরক্ষায় সাইবার নিরাপত্তা খুবই জরুরি। আমি আশা করি, ২০১০ সালে যুক্তরাষ্ট্রের সংস্কারমূলক কাজকর্মের উদ্যোগ যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সম্পূর্ণ হবে। ভারতে দুর্নীতি ও কালো টাকার প্রশ্নে আমাদের সরকার কোনরকম সমঝোতা বা আপোষ করতে রাজি নয়। অঘোষিত সম্পদ এবং বিদেশে গচ্ছিত অর্থের মতো সমস্যাগুলির মোকাবিলায় আমরা নতুন আইন প্রণয়ন করেছি। এছাড়াও, দ্বিপাক্ষিক কিছু কর চুক্তির ব্যাপারেও আমরা বেশ কিছুটা এগিয়ে গিয়েছি। দেশের অভ্যন্তরে হিসাব বহির্ভূত অর্থ মজুতের বিরুদ্ধেও আমরা সফল অভিযান চালিয়েছি। সরকারি সংগ্রহের ব্যাপারে অচিরেই আমরা একটি বিধি প্রণয়ন করতে চলেছি। আন্তর্জাতিক প্রচেষ্টাকে জোরদার করে তোলার লক্ষ্যে সবক’টি দেশেরই উচিত কর সংক্রান্ত তথ্যের বিনিময়কে স্বয়ংক্রিয় করে তোলা। দুর্নীতি দমনের বিষয়টিকে জি-২০-তে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত। বেসরকারি ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা ও সংহতির প্রসারের বিষয়টিকে আমি স্বাগত জানাই। দেশের অর্থ বিদেশে পাচার হওয়ার বিরুদ্ধে এবং ঐ অর্থ আবার দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তুলতে হবে। ব্যাঙ্ক ক্ষেত্রে অতিরিক্ত গোপনীয়তা এবং জটিল আইনি ও বিধিনিয়ম সংক্রান্ত ব্যবস্থাগুলি সম্পর্কে আমাদের প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। সন্ত্রাসবাদে আর্থিক মদত দেওয়ার বিরুদ্ধে অভিযানে আমাদের সহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তুলতে হবে। পরিশেষে, আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ জানাই। জিস্যাট – ১১’র সফলভাবে উৎক্ষেপণ করার জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা ইসরো’কে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী অভিনন্দন জানিয়েছেন। সবচেয়ে ভারী, সবচেয়ে বড় ও উন্নত প্রযুক্তি যুক্ত ভারতের যোগাযোগ উপগ্রহ জিস্যাট – ১১’র সফল উৎক্ষেপণের জন্য ইসরো’কে অভিনন্দন। বৈঠকে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। ভারতও আর্মেনিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত এই চুক্তির মেয়াদ পাঁচ বছর। এছাড়াও, যে কোন পক্ষের ছ’মাসের আগাম নোটিশের ভিত্তিতে চুক্তিটির মেয়াদ শেষকরা যেতে পারে । দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য যুববিনিময়, যুব সংগঠনগুলির প্রতিনিধিদের মধ্যে বিনিময় কর্মসূচি এবং যুব বিষয়ক নীতিরচনার কাজে সংশ্লিষ্ট সরকারি আধিকারিকদের বিনিময় কর্মসূচি সহ বিভিন্নকর্মপ্রচেষ্টাকে উৎসাহিত করা হবে এর আওতায়। দু’দেশেই আয়োজিত হবে যুব বিষয়ককর্মসূচির ওপর আন্তর্জাতিক সেমিনার ও সম্মেলন। “মহাত্মাফুলের জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধা জানাই। সমাজ সংস্কারের প্রতি তাঁর নেতৃত্ব ও অক্লান্তপ্রচেষ্টা প্রান্তিক মানুষদের বিশেষভাবে সাহায্য করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার (৭ অক্টোবর) দেরাদুনে “গন্তব্য উত্তরাখন্ড : বিনিয়োগকারি সম্মেলন, ২০১৮-তে” প্রধানমন্ত্রীর ভাষন দেন। তিনি বলেন, ভারত এখন দ্রুত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে চলেছে। আগামী দশকগুলিতে ভারত বিশ্বজুড়ে বিকাশের ক্ষেত্রে এক অন্যতম চালিকাশক্তি হয়ে উঠবে বলে সর্বত্র স্বীকৃতি পাচ্ছে। ভারতে আর্থিক সংস্কারের ও তার পরিমান অভূতপূর্ব। এ প্রসঙ্গে, শ্রী মোদী বলেন, সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার ক্রমতালিকায় ভারত ৪২ ধাপ উপরে উঠে এসেছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, স্বাধীনোত্তরকালে অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা করের (জিএসটি) রূপায়ণ, কর ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় সংস্কার। এই কর ব্যবস্হা দেশকে ‘এক-বাজারে’ পরিণত করতে এবং কর-সংগ্রহ বাড়াতে সাহায্য করেছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। তিনি অ-সামরিক বিমান পরিবহন ক্ষেত্রে অগ্রগতির পাশাপাশি সাধারণ মানুষের স্বার্থে আবাসন, বিদ্যুৎ, দূষণমুক্ত জ্বালানি, স্বাস্হ্য ও ব্যাঙ্কিং পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার কথাও বিশদে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, সদ্য চালু হওয়া ‘আয়ুষ্মান ভারত’ কর্মসূচি টিয়ার টু এবং টিয়ার থ্রি শহরগুলিতে চিকিৎসা পরিকাঠামো ব্যবস্হার উন্নতি ঘটাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘নতুন ভারত’ বিনিয়োগের এক উপযুক্ত গন্তব্য এবং ‘গন্তব্য উত্তরাখন্ড’- এই নীতিকেই প্রতিফলিত করে। পর্যটন ক্ষেত্রেও এই রাজ্যের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে বলে শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং পুননর্বীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে যে সমস্ত উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে, তার কথাও উল্লেখ করেন। চ্যান্সেলর মার্কেলের মতো একজনঅভিজ্ঞ নেত্রীর উপস্থিতিতে আপনাদের সঙ্গে কথা বলার সুযোগ পাওয়া আমার এই আনন্দকেআরও বহুগুণে বাড়িয়ে তুলেছে। তাঁর সঙ্গে সাক্ষাতের কোন সুযোগই আমি সাধারণত হাতছাড়াকরি না। ২০১৫-র এপ্রিলে হ্যানোভার মেলা উপলক্ষে আমার সফরকালে তাঁর সঙ্গেআলাপ-আলোচনার কথা আমি বিশেষভাবে স্মরণ করি। ঐ মেলায় ভারত ছিল অংশগ্রহণকারী একসহযোগী দেশ। ভারতেবিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে জার্মানি রয়েছে সপ্তম স্থানে। প্রায় ২লক্ষ মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারিত হয়েছে এই ক্ষেত্রগুলিতে। তাসত্ত্বেওভারত-জার্মানি অর্থনৈতিক সহযোগিতার সম্ভাবনা রয়েছে প্রচুর। কারণ, আমাদের অর্থনৈতিকঅংশীদারিত্বের পূর্ণ সম্ভাবনাকে আমরা এখনও পুরোপুরিভাবে কাজে লাগাতে পারিনি। তাই,এই লক্ষ্য পূরণে জার্মান সংস্থাগুলিকে স্বাগত জানাতে ভারত সর্বদাই প্রস্তুত। শুধুতাই নয়, জার্মানির শিল্প সংস্থাগুলিকে সর্বতোভাবে সহায়তা করার জন্য আমরা গড়েতুলেছি এক ‘ফাস্ট ট্র্যাক’ ব্যবস্থা। ভারতকেবিশ্বের এক বিশেষ নির্মাণ তথা উৎপাদন কেন্দ্র রূপে গড়ে তোলার কাজে নিযুক্ত রয়েছিআমরা। উৎপাদন সংক্রান্ত কাজের উপযোগী এক সুপরিবেশ আমরা ইতিমধ্যেই সেখানে গড়ে তুলতেপেরেছি। জ্ঞানও শক্তিতে ভরপুর এক দক্ষ ও বিশাল পেশাদারিত্ব; বিশ্বমানেরইঞ্জিনিয়ারিং শিক্ষা এবং গবেষণা ও উন্নয়ন সংক্রান্ত বিশেষ সুযোগ-সুবিধা; জিডিপি-রঊর্ধ্বমুখী হার এবং অভ্যন্তরীণ বিপণনের ক্ষেত্রে ক্রয় ক্ষমতার ক্রম উত্থান; বিশ্বেরসর্বাপেক্ষা উদার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতি অনুসরণের এক বিশেষ সময়কাল; বাণিজ্যিকপরিবেশকে সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে সরকারের বিশেষ উদ্যোগ ও কর্মপ্রচেষ্টা। ভারতেরএই সমস্ত বিশেষ বিশেষ শক্তির কারণেই ইউনিডো-র মতে ভারত ইতিমধ্যেই বিশ্বের ষষ্ঠবৃহত্তম উৎপাদনকারক এক রাষ্ট্র হিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছে। এই পরিস্থিতিকে উন্নততরকরে তোলার লক্ষ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমরা কঠোর পরিশ্রম করে চলেছি। ‘মেকইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির মাধ্যমে বিশ্বের মূল্য শৃঙ্খলে এক বিশেষ ভূমিকা পালনেরলক্ষ্যে ভারতের রূপান্তর সাধনের কাজে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের মূল উদ্দেশ্য হলকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি এবং আর্থিক দিক দিয়ে সমাজের বলশালী অংশের সঙ্গে নিচেরতলাগুলির ব্যবধান কমিয়ে আনা। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির এক বিশেষ প্রভাবইতিমধ্যেই আমরা লক্ষ্য করেছি। ‘মেকইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির এই সাফল্যে জার্মানি এক বড় ভূমিকা পালন করছে। হ্যানোভারমেলায় এক সহযোগী দেশ হিসেবে ভারতের অংশগ্রহণ ভারত-জার্মানি সহযোগিতার ক্ষেত্রেবিশেষ উৎসাহ যুগিয়েছে। হ্যানোভার মেলায় সহযোগিতার কয়েকটি সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্র আমরাপারস্পরিক সম্মতিতে চিহ্নিত করেছি। এগুলি হল – নির্মাণ ও উৎপাদন, বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি, দক্ষতা বিকাশ, রেল, নদী সংস্কার, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি, শিক্ষাইত্যাদি। এছাড়াও, ২০১৫-র সেপ্টেম্বর মাস থেকে আমরা কৌশলগত দিক থেকে বিপণনব্যবস্থাকে সহায়তার লক্ষ্যে এক কর্মসূচিও রূপায়ণ করে চলেছি । আমরা এর নামদিয়েছে ‘এমআইআইএম’ (মেক ইন ইন্ডিয়া মিট্‌লস্ট্যান্ড)। এটি মূলত ভারতীয় বাজারে প্রবেশও অন্তর্ভুক্তির জন্য জার্মানির মিট্‌লস্ট্যান্ড সংস্থাগুলিকে সাহায্য ও সহযোগিতারলক্ষ্যে এক বিশেষ উদ্যোগ । এমআইআইএমকর্মসূচিতে বাণিজ্যিক সহায়তাদানের উদ্দেশ্যে বেশ কিছু পরিষেবা যোগানের ব্যবস্থারয়েছে। আমাদের এই উদ্যোগ ভারত সম্পর্কে জার্মান শিল্প সংস্থাগুলির আগ্রহ আরওবাড়িয়ে তুলেছে। এরসুফলগুলি হল এই যে অল্প সময়ের মধ্যেই : ৮৩টিশিল্প সংস্থা এই কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য তাদের আগ্রহ প্রকাশ করেছে; ৭৩টিসংস্থা সরকারিভাবে তাদের নাম অন্তর্ভুক্ত করেছে; এই কর্মসূচিটি হল বিশেষভাবে ভারতেরক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির বাণিজ্যিক কর্মকর্তাদের জন্য এক উন্নতপ্রশিক্ষণসূচি। এই কর্মসূচি রূপায়ণের ফলে : একদিকেযেমন বিনিয়োগ বৃদ্ধি পেয়েছে, অন্যদিকে তেমনই গড়ে উঠেছে নতুন নতুন যৌথ উদ্যোগ।এছাড়াও, দুটি দেশের বি২বি সংযোগ ও যোগাযোগের মাত্রাও তাতে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধিপেয়েছে। ৫০০-রওবেশি ভারতীয় ম্যানেজার ইতিমধ্যেই উপকৃত হয়েছেন এই কর্মসূচিটির আওতায়। এছাড়াও,ইতিমধ্যে সৃষ্টি হয়েছে এক বিশেষ পরিবেশের। মার্সিডিজবেন্‌জ ইন্ডিয়া জুলাই, ২০১৫-তে তার দ্বিতীয় উৎপাদন সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা কেন্দ্রগড়ে তুলেছে চাকান-এ। এর ফলে, প্রকল্পের উৎপাদন ক্ষমতা বছরে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েদাঁড়াবে ২০ হাজারের মতো। আমাদেরএই উদ্যোগের ফলশ্রুতিতে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সুনাম ও স্বীকৃতি আমরা আদায় করতেপেরেছি। তারই কিছু আমি এখানে তুলে ধরতে আগ্রহী। বিশ্বেরঅর্থনৈতিক পরিস্থিতি যখন এক প্রতিকূলতার মধ্য দিয়ে চলেছে, তখনও ভারত রয়েছে একউজ্জ্বল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে; ৭শতাংশেরও বেশি জিডিপি-র হার বৃদ্ধির নিরিখে গত তিন বছরের মধ্যে ভারত আত্মপ্রকাশকরেছে দ্রুততম গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া এক প্রধান বিশ্ব অর্থনীতি হিসেবে; বিশ্বঅর্থনৈতিক ফোরামের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামুখিনতার সূচক অনুযায়ী, গত দু’বছরে ভারতঅতিক্রম করে এসেছে ৩২টি স্থান – যে কোন দেশের পক্ষে এটি হল সর্বোচ্চ; বিশ্বব্যাঙ্কের সার্বিক সাফল্যের নিরিখে ভারত অতিক্রম করে এসেছে ১৯টি স্থান; ডব্ল্যুআইপিও-র২০১৬-র বিশ্ব উদ্ভাবন সূচকের নিরিখে ভারত পার হয়ে এসেছে ১৬টি ধাপ; আঙ্কট্যাড-এরতালিকা অনুযায়ী প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে শীর্ষ স্থানীয় ১০টি গন্তব্যেরতৃতীয় স্থানটি অধিকার করে রয়েছে ভারত; কয়েকটিদৃষ্টান্তের আমি উল্লেখ করলাম মাত্র। আমরা বর্তমানে সরকারি হস্তক্ষেপের মাত্রাকমিয়ে এনে জোর দিচ্ছি সুপ্রশাসন তথা পরিচালনের ওপর। এখানেও আমি কয়েকটি দৃষ্টান্ততুলে ধরতে আগ্রহী : ডিজিটালঅর্থনীতির পথে আমরা দ্রুত এগিয়ে চলেছি; এযাবৎকালেরমধ্যে ভারতের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক সংস্কারগুলির মধ্যে অন্যতম হলজিএসটি যা আগামী মাস থেকে চালু হতে চলেছে; গতদু’বছরে ব্যক্তিগত তথা কর্পোরেট ক্ষেত্রে অপেক্ষাকৃত কম হারের এক কর ব্যবস্থা আমরাগড়ে তুলেছি; বাণিজ্যিককাজকর্ম সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে ৭ হাজারেরও বেশি সংস্কার কর্মসূচি আমরা রূপায়ণকরেছি; ৩৬টিশিল্প সংস্থাকে পরিবেশগত ছাড়পত্রের আওতার বাইরে আমরা নিয়ে এসেছি; একইভাবে,৫০টি পণ্যকে আমরা রেখেছি প্রতিরক্ষা উৎপাদন তালিকার বাইরে; শিল্পলাইসেন্সের বৈধতার মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে ১৫ বছর পর্যন্ত; ১৯টিবন্দর এবং ১৭টি বিমান পণ্য পরিবহণ কেন্দ্রে কাস্টম্‌স সংক্রান্ত ছাড়পত্র দেওয়ারব্যবস্থা চালু হয়েছে সপ্তাহের সাতদিন, ২৪ ঘন্টাই; ডিআইএন,প্যান, ট্যান এবং সিআইএন বন্টনের মাধ্যমে যে কোন সংস্থার অন্তর্ভুক্তি এখন মাত্রএকদিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ করা সম্ভব; বিদ্যুৎসংযোগের ব্যবস্থা করা হয় মাত্র ১৫ দিনের মধ্যেই; বিশ্বব্যাঙ্কের ‘বিদ্যুৎ সংযোগ’ সম্পর্কিত মাপকাঠিতে ১১১টি স্থান অতিক্রম করে এসেছেভারত। দেশেরবিভিন্ন রাজ্যে যে হাজার হাজার সংস্কার কর্মসূচির কাজ চলছে, এই উদাহরণগুলি তারকয়েকটি মাত্র। যুক্তরাষ্ট্রীয় সরকারের সাথে সাথে রাজ্যগুলিও এই ধরনের সংস্কার কর্মসূচিচালিয়ে যাওয়ার বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেছে। তারই কয়েকটি দৃষ্টান্ত আমি এখানেতুলে ধরতে চাই : এখানেআমি কয়েকটি রাজ্যের কথা উল্লেখ করলেও, প্রতিযোগিতামুখিনতার কারণে এই সংস্কারপ্রচেষ্টা দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে। সংস্কারকর্মসূচিগুলির মধ্যে রয়েছে – আর্থিকলেনদেন এবং অনুমোদনের ১০০ শতাংশের ক্ষেত্রেই ‘এক জানালা’ পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছেদেশের ১৬টি রাজ্যে; ১৩টিরাজ্যে পুরোপুরি চালু হয়েছে ই-ফাইলিং-এর মাধ্যমে কর সংক্রান্ত রিটার্ন পেশ করারপদ্ধতি; ১৩টিরাজ্যে স্বয়ংক্রিয় অনলাইন পদ্ধতিতে চালু হয়েছে গৃহ নির্মাণ সংক্রান্ত পরিকল্পনাঅনুমোদনের ব্যবস্থা; বাণিজ্যিকবিরোধ নিষ্পত্তির লক্ষ্যে ১১টি রাজ্যে রূপায়িত হয়েছে ই-ফাইলিং পদ্ধতি; ১৩টিরাজ্যে জেলা পর্যায়ে স্থাপন করা হয়েছে বিশেষ বিশেষ বাণিজ্যিক আদালত। বিশ্বেরযে সমস্ত স্থানে সর্বাপেক্ষা উদার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতি অনুসৃত হচ্ছে,ভারত হল তার অন্যতম। এখানে ৯০ শতাংশেরও বেশি বিদেশি বিনিয়োগ পরিচালিত হচ্ছেস্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায়। সুতরাং, উন্নয়নের প্রশ্নে এখানে কোন কিছুই যথেষ্ট বা পর্যাপ্তনয়। কিন্তু একনির্দিষ্ট সময়সীমার মধ্যেই এই স্বপ্ন পূরণের কাজে আমাদের সফল হতে হবে। আর এখানেইরয়েছে আপনাদের জন্য এক বিশেষ সুযোগ। ‘ডিজিটালভারত’ এবং ‘দক্ষ ভারত’ অভিযানের মাধ্যমে সাধারণ মানুষের সম্ভাবনাকে কাজে লাগানোরউদ্দেশ্যে তাঁদের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যেও আমরা সচেষ্ট রয়েছি। দেশের যুবশক্তিকেপুরোপুরিভাবে কাজে লাগানোর জন্য আমরা সূচনা করেছি ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ এবং‘স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির। চ্যান্সেলরমার্কেল এবং বন্ধুগণ ! আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে এই সমস্ত সংস্কার কর্মসূচি উপলব্ধি করা এবংতাকে সমর্থন জানানোর জন্য এক প্রাতিষ্ঠানিক নেটওয়ার্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন। আমাদেরদুটি দেশের অর্থনৈতিক সম্ভাবনার পূর্ণ সদ্ব্যবহারের জন্য এই ব্যবস্থা একান্তজরুরি। পরিশেষে, আরও বেশি সংখ্যক জার্মান সংস্থা ও সহযোগীদের আমি আমন্ত্রণ জানাইআমাদের দেশ ভারতে। আমাদেরলক্ষ্য, আকাঙ্ক্ষা ও স্বপ্ন মিলিতভাবে গড়ে তুলতে পারে এক বিশেষ বাণিজ্যিকসুযোগ-সুবিধার পরিবেশ । অতীতে ভারত কোনদিন বাণিজ্যিক দিক থেকে এইভাবেপ্রস্তুত হয়ে উঠতে পারেনি। সেই কাজের সূচনা করেছি আমরা। আমাদের গণতান্ত্রিকমূল্যবোধ এবং সদা সতর্ক এক বিচার ব্যবস্থা আপনাদের বিনিয়োগ সুরক্ষিত রাখারবিষয়টিকে নিশ্চিত করে তুলবে। আপনাদেরএই প্রচেষ্টাকে সফল করে তুলতে আমরা একযোগে কাজ করে যাব – এই আশ্বাস আমি এখানে দিয়েযেতে চাই। নয়াদিল্লি, ০২ মার্চ, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি শিল্পকে সাইবার নিরাপত্তার বিশ্বব্যাপী চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় আরও নজর দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। এই চ্যালেঞ্জের বিষয়ে সমগ্র জগতের চিন্তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি পেশাদাররা বিশ্ব জুড়ে ডিজিটাল সম্পদের সাইবার নিরাপত্তার জন্য অনেক কিছুই করতে পারেন। ন্যাসকমের রজতজয়ন্তী বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে গতকাল আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী ভাষণ দিচ্ছিলেন। ভারতে তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ন্যাসকমের অবদানের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত স্বল্প সময়ের মধ্যে খুব কমই সংগঠন আন্দোলনের রূপ নিতে পারে। তিনি বলেন, তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে ভারতীয় যুব সম্প্রদায়ের সফলতার দরুন সমগ্র বিশ্বই ভারত’কে অন্যভাবে দেখা শুরু করেছে। এই অনুষ্ঠানের মূল বিষয় : ‘তথ্য প্রযুক্তি – কালকের ভারতে’র কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের বিপুল সম্ভাবনা যেমন রয়েছে তেমনই নাগরিক-কেন্দ্রীক পরিষেবা ও মোবাইল প্রশাসনের জন্যও মোবাইল অ্যাপলিকেশন সহজলভ্য করার বিষয়ে এই ক্ষেত্রটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে। ডিজিটাল ভারত কর্মসূচি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ই-প্রশাসনের মাধ্যমে প্রশাসন ও আর্থিক প্রশাসন সহজ হয়। তিনি আরও বলেন, সরকার তথ্য প্রযুক্তি পরিকাঠামো গড়ে তুলছে এবং এই শিল্পের উদ্ভাবনগুলি গ্রহণ করবে। ডিজিটাল ডেটাবেস (তথ্য ভান্ডার) প্রসঙ্গে তিনি বলেন, অদূর ভবিষ্যতে বিশ্বের ‘ডিজিটাল গুদামঘরের’ প্রয়োজনীয়তা দেখা দেবে। ভারতে ডিজিটাল বৈষম্য দূর করারও প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী দুর্নীতি নির্মূল করতে প্রযুক্তি কিভাবে সাহায্য করে চলছে তা ব্যাখ্যা করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি কয়লা ব্লক নিলাম ও রান্নার গ্যাসের ভর্তুকিতে নগদ সুবিধা হস্তান্তরের কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী ভারতে পর্যটনের বিকাশে ভারতীয় তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রকে সহায়তা করার অনুরোধ জানান। এই প্রসঙ্গে তিনি ভারতের ঐতিহ্যকে তুলে ধরতে বাস্তাবিক সংগ্রহালয় গড়ে তোলার কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী শিল্প সংস্থাগুলিকে বিদ্যালয়ে ই-গ্রন্থাগার গড়ে তোলার কাজে সহায়তা করার জন্য আহ্বান জানান। শিল্প ক্ষেত্রে বিশেষ অবদান রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী ‘ইমপ্যাক্ট অ্যাওয়ার্ড’ প্রদান করেন। তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উদ্ভাবনমূলক কর্মকাণ্ডকে উৎসাহ যোগাতে প্রধানমন্ত্রী ‘ভারতীয় চ্যালেঞ্জের জন্য ন্যাসকমের উদ্যোগের’ও সূচনা করেন। নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার জলসম্পদের ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য ভারত ও মরক্কোর মধ্যে সমঝোতা স্মারক (মউ)স্বাক্ষরের অনুমোদন দিল| ১.হাইড্রলিক পরিকাঠামোগুলির, বিশেষ করে বড় বাঁধ ও জল স্থানান্তর প্রকল্পগুলোর ধারণা,বাস্তবরূপ ও রক্ষণাবেক্ষণ| ২.সুসংহত জল সম্পদ পরিচালনা অর্থাত ভূপৃষ্ঠ ও ভূগর্ভস্থ জল সম্পদের মধ্যে সংযোজন, জলব্যবহারের দক্ষতা বৃদ্ধি, জলবায়ু পরিবর্তনের স্থিতিস্থাপকতা ও অভিযোজন, জলস্তরেরকৃত্রিম রিচার্জ বা পুনরুজ্জীবন এবং সাংগঠনিক, প্রাতিষ্ঠানিক ও ব্যবস্থাপন দিক| ৩.বন্যা ও খরা ব্যবস্থাপনা| ৪.রিচার্জ বা পুনরুজ্জ্জীবন বৃদ্ধি করা সহ ভূগর্ভস্থ জল সম্পদের দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়নও ব্যবস্থাপনা| ৫.বৃষ্টির জলের সংগ্রহ ও মূল্যায়ন এবং জলবায়ুর স্থিতিস্থাপকতা ও অভিযোজন| এইসহযোগিতার মধ্যে রয়েছে: ১.বিশেষজ্ঞদের আসা-যাওয়া ও বিভিন্ন কর্মকাণ্ড| মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী তথা স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী দাতো ’ সেরি ডঃ আহমদ জাহিদ হামিদিমঙ্গলবার এখানে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদীর সঙ্গে। মালয়েশিয়ার উপপ্রধানমন্ত্রী তথাস্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে স্বাগত জানিয়ে শ্রী মোদী গতবছর আশিয়ান শীর্ষ বৈঠক তথাঅন্যান্য আলোচনা ও দ্বিপাক্ষিক সফরের উদ্দেশ্যে তাঁর মালয়েশিয়া সফরের সাফল্যের স্মৃতিচারণকরেন। দু-দেশের মধ্যে সন্ত্রাসবাদ, সাইবার অপরাধ, তথা অন্যান্য অপরাধমূলকঘটনার কার্যকর মোকাবিলায় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়ে ভারতেরপ্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা ও মত বিনিময় করেন ডঃ আহমদ জাহিদ হামিদি। এই সিদ্ধান্ত অবশ্যই কাঠামোগত সংস্কার। বর্তমানে প্রাকৃতিক গ্যাস সরবরাহের জন্য বিভিন্ন পরিবহণকারী সংস্থা বিভিন্ন বিপণন ‘মার্জিন’ নিয়ে থাকে। নাগরিকত্ব বিল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী এই বিল সম্পর্কে যে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে সে বিষয়েও বিভ্রান্ত না হওয়ার আবেদন জানান। রাজনৈতিক স্বার্থসিদ্ধি এবং ভোটব্যাঙ্কের লক্ষ্যকে সামনে রেখে প্রধানমন্ত্রী রাজনৈতিক দলগুলিকে আসামের সাধারণ মানুষের আবেগ নিয়ে না খেলার আহ্বান জানান। উত্তর-পূর্বের মানুষকে আশ্বস্ত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নাগরিকত্ব (সংশোধন) বিলের জন্য তাঁদের রাজ্যের কোন ক্ষতি হবে না। আসাম চুক্তি রূপায়িত হলে রাজ্যবাসীর চাহিদাগুলি পূর্ণ হবে। দুর্নীতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “চৌকিদার দুর্নীতির শিরদাড়া ভেঙে দিচ্ছে। এই উপলক্ষে, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ, সিকিম ও আসাম দিয়ে অতিবাহিত ৭২৯ কিলোমিটার দীর্ঘ বারাউনি-গুয়াহাটি গ্যাস পাইপলাইন সহ নুমালিগড়ে এনআরএল বায়ো-রিফাইনারির শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে যে ১২টি বায়-রিফাইনারি বা জৈব তৈল শোধনাগার গড়ে তোলা হচ্ছে, নুমালিগড় তার অন্যতম বৃহৎ একটি। ১০ শতাংশ পর্যন্ত ইথানল মিশ্রণের সরকারি পরিকল্পনার কথাও তিনি জানান। এরপর প্রধানমন্ত্রী কামরূপ, কাছার, হাইলাকান্দি ও করিমগঞ্জ জেলায় নগর-কেন্দ্রিক গ্যাস বিতরণ নেটওয়ার্কের শিলান্যাস করেন। আলোচ্য সময়ে সিএনজি রিফিলিং স্টেশনের সংখ্যা ৯৫০ থেকে বেড়ে ১,৫০০ হয়েছে। ব্রহ্মপুত্র নদের ওপর ছ’লেন বিশিষ্ট সেতুর শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। তাঁর সরকার গোপীনাথ বরদোলোই ও ভুপেন হাজারিকাকে দেশের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ দিয়ে ভূষিত করায় তিনি গর্ব প্রকাশ করেন। নিজের জীবনে সেবা, ত্যাগ এবং করুণাকে উপলব্ধি করার দিন আজ। ত্রাণকর্তা যিশু বলেছেন – “দরিদ্রের জন্য উপকারই নয়, চাই তাঁদের জন্য আমাদেরস্বীকৃতি”। এই সম্পর্কে বহুল প্রচলিত একটি গল্প আছে। তাঁর জন্মদিনে জানাইভাব-গম্ভীর শ্রদ্ধাঞ্জলি। মাত্র দু-দিন আগেই মালব্যজীর তপভূমি বেনারসে বেশ কয়েকটিউন্নয়নমূলক কাজের শুভ সূচনা করার সুযোগ হয়েছিল আমার। ‘বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটি’–তে‘মহামতি মদনমোহন মালব্য ক্যানসার সেন্টার’-এরও শিলান্যাস করেছি। আজ ভারতের প্রাক্তণপ্রধানমন্ত্রী ভারতরত্ন অটলবিহারী বাজপেয়ীজীরও জন্মদিন। এই দেশ অটলজীর অবদানের কথাকখনো ভুলবে না। ওঁনারই নেতৃত্বে পরমাণু শক্তির ক্ষেত্রেও আমাদের দেশের মাথা উঁচুহয়েছে। দলনেতা, সাংসদ, মন্ত্রী কিংবা প্রধানমন্ত্রী – প্রত্যেকটি ভূমিকাতেই অটলজীএক আদর্শ স্থাপন করেছেন। অটলজীর জন্মদিনে আমার প্রণাম জানাই এবং সুস্বাস্থ্যেরজন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা জানাই। একজন কর্মী হিসেবে অটলজীর সঙ্গে কাজ করারসৌভাগ্য হয়েছে আমার। অনেক স্মৃতির ছবি চোখের সামনে ভাসছে। বড়দিনের উপহার হিসেবে সমস্তদেশবাসী আজ দুটি যোজনার সুফল লাভ করতে চলেছেন। এক প্রকার দুটি নতুন যোজনারশুভারম্ভ হচ্ছে। প্রত্যেকেই একে অপরের কাছে বুঝতে এবং শিখতে চাইছেন। এইব্যাপারটাকে উৎসাহ দেওয়ার জন্য, মোবাইল ব্যাঙ্কিং-এর শক্তি বৃদ্ধির জন্য, ‘ই-পেমেন্ট’-কে অভ্যাসে পরিণত করার জন্য ভারত সরকার গ্রাহক এবং ক্ষুদ্রব্যবসায়ীদের উৎসাহ-বর্দ্ধক এক যোজনার সূত্রপাত করছে আজ। গ্রাহকদের উৎসাহিত করার যোজনাটিহল – ‘লাকি গ্রাহক যোজনা’ এবং ব্যবসায়ীদের যোজনাটির নাম – ‘ডিজি-ধন ব্যাপারযোজনা’। আর ২৫-শে ডিসেম্বর, ক্রিসমাসেরউপহার হিসেবে ‘ড্র’ পদ্ধতির মাধ্যমে ১৫ হাজার মানুষের অ্যাকাউণ্টে এক-এক হাজারটাকা জমা হবে। আজ শুধু একদিনের জন্য নয়, এই যোজনা আগামী ১০০ দিন ধরে চলবে।প্রতিদিন ১৫ হাজার মানুষ পাবেন এই পুরস্কার। ১০০ দিনে লক্ষাধিক পরিবারের কাছে কোটি টাকার উপহার পৌঁছে যাবে – কিন্তু এই উপহারেরযোগ্য হবেন তাঁরাই, যাঁরা ‘মোবাইল ব্যাঙ্কিং’, ‘ই-ব্যাঙ্কিং’, ‘রূপে কার্ড’, ‘ UPI ’, ‘ USSD ’ ইত্যাদি যত রকমডিজিট্যাল লেনদেন পদ্ধতি আছে, তার ব্যবহার করবেন। ড্র নির্ভর করবে এরই ওপর। এর সঙ্গে সপ্তাহে এক দিন আরও বড়আকারে ড্র হবে, যেখানে পুরস্কার থাকবে লক্ষ টাকা এবং তিন মাস পরে ১৪-ই এপ্রিলডক্টর বাবাসাহেব আম্বেদকরের জন্মদিনে এক বাম্পার ড্র হবে, যেখানে পুরস্কার থাকবেকোটি টাকার। ‘ডিজি-ধন ব্যাপার যোজনা’ হলব্যবসায়ীদের জন্য। ব্যবসায়ী নিজে যেমন এই যোজনায় নিজেকে যুক্ত করবেন, তেমনই নিজেরব্যবসাকে ক্যাশলেস করার ক্ষেত্রে গ্রাহকদেরও যুক্ত করবেন। ব্যবসায়ীদেরকেওআলাদাভাবে পুরস্কার দেওয়া হবে এবং সেই পুরস্কারের সংখ্যা হবে হাজার-হাজার। এতেনিজেদের ব্যবসাও চলবে আবার পুরস্কারও মিলবে। এই ৩০ কোটি মানুষইতো এইপুরস্কার যোজনার অংশীদার হতে পারেন। আমি বিশ্বাস করি যে দেশবাসী এই পদ্ধতির প্রতিআগ্রহ দেখাবেন এবং আশেপাশের তরুণ প্রজন্মের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা নিশ্চয়ই বলেদেবেন। আপনার পরিবারে দশ বা বারো ক্লাসের বাচ্চাটিও আপনাকে ভালোভাবে এই পদ্ধতিশিখিয়ে দিতে পারবে। এটি খুব সহজ – মোবাইল ফোন থেকে হোয়াটস্‌ অ্যাপ পাঠানোর মতই সহজকাজ। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমি এটাজেনে খুশী হয়েছি যে দেশের মধ্যে প্রযুক্তির ব্যবহার কীভাবে করতে হবে, ই-পেমেন্টকীভাবে হবে, অনলাইন পেমেন্ট কীভাবে করতে হবে – এসবের সচেতনতা দ্রুতগতিতে বাড়ছে। গতকিছুদিনের মধ্যে ক্যাশলেস ব্যবসা, বিনা নগদে লেনদেন ২০০ থেকে ৩০০ শতাংশ বেড়েছে। এইপদ্ধতিকে উৎসাহিত করার জন্য ভারত সরকার একটা বড় সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত যেকত বড় সেটা ব্যবসায়ীরা সহজেই অনুমান করতে পারেন। যে সব ব্যবসায়ীরা ডিজিট্যালআদান-প্রদান করবেন, নিজের ব্যবসাতে নগদের পরিবর্তে অনলাইন পেমেন্ট পদ্ধতি প্রসারিতকরবেন, তাঁদের আয়করে ছাড় দেওয়া হবে। আমি জেনেছি, আসাম সরকার প্রপার্টি ট্যাক্স এবং বাণিজ্য লাইসেন্স ফিডিজিট্যালি প্রদান করলে ১০ শতাংশ ছাড়ের ঘোষণা করেছে। গ্রামীণ ব্যাঙ্কের শাখাগুলিসিদ্ধান্ত নিয়েছে, নিজেদের ৭৫ শতাংশ গ্রাহক জানুয়ারি থেকে মার্চ পর্যন্ত কম করেদুটি ডিজিট্যাল ট্র্যানজাকশন করলে তাঁদের সরকারের পক্ষ থেকে ৫০,০০০ টাকা পুরস্কৃতকরা হবে। আমি অসম সরকারকে অভিনন্দন জানাচ্ছিএবং যে সব রাজ্য এই রকম উদ্যোগ নিয়েছে তাদেরকেও অভিনন্দন জানাচ্ছি। অনেক সংস্থাওগ্রামাঞ্চলে কৃষকদের মধ্যে ডিজিট্যাল আদান-প্রদানকে প্রসারিত করার জন্য অনেক সফল উদ্যোগনিয়েছে। মজার কথা হলো, গত বছরের তুলনায় GNFC -এর সার বিক্রিবেড়েছে ২৭ শতাংশ। ভাই-বোনেরা, আমাদেরঅর্থব্যবস্থায়, আমাদের দৈনন্দিন জীবনে অসংগঠিত ক্ষেত্রের গুরুত্ব আছে। বেশিরভাগক্ষেত্রেই এই সব লোকজনের মজুরীর টাকা, কাজের জন্য টাকা বা বেতন নগদেও দেওয়া হয়, আরআমরা জানি, এর জন্য শ্রমিকদের বঞ্চনাও করা হয়। আর সঙ্গে অন্য সব সুযোগ-সুবিধারওদাবীদার হচ্ছে। আমাদের দেশ সর্বাধিক যুবদের দেশ। আমাদের তরুণরাস্টার্ট-আপ-এর মাধ্যমে অনেক উন্নতি করেছে। দেশকেকালো টাকা এবং আর্থিক দুর্নীতি থেকে মুক্ত করার অভিযানে সম্পূর্ণ শক্তি দিয়েআমাদের সামিল হতে হবে। আমি আমার দেশবাসীর কাছে কৃতজ্ঞ, কারণ তাঁরা চিঠি লিখে আমাকে যথেষ্ট মদতযুগিয়েছেন। শ্রীমান গুরুমণি কেওবল ‘মাই গভ’-এ লিখেছেন – কালো টাকায় রাশ টানার জন্যএই পদক্ষেপ প্রশংসার যোগ্য। নাগরিক হিসেবে আমাদের অসুবিধে হচ্ছে ঠিকই, কিন্তু আমরাযে দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়ছি, সেই লড়াইতে সহযোগিতা করছে, এতেই আমরা খুশি। দুর্নীতি,কালো টাকা ইত্যাদির বিরুদ্ধে যুদ্ধে আমরা সেনাবাহিনীর ভূমিকা পালন করছি। তবে একথা সত্যি যে জনসাধারণকে যখন এত কষ্ট, এতঅসুবিধা ভোগ করতে হচ্ছে, তখন এমন কোন মানুষ আছেন, যাঁর খারাপ না লাগে? আপনাদেরযতটা খারাপ লাগছে, আমারও ততটাই খারাপ লাগছে। কিন্তু আমি দেখেছি, নানা রকমের গুজব ছড়িয়েও দেশবাসীকে কেউ বিভ্রান্ত করতেপারেনি। আমিজনগণের এই শক্তিকে শত শত প্রণাম জানাই। জনতা জনার্দনই তো ঈশ্বরেরপ্রতিভূ, জনতার আশীর্বাদ ঈশ্বরেরই আশীর্বাদ। আমি দেশের জনগণকে ধন্যবাদ দিচ্ছি,প্রণাম জানাচ্ছি দুর্নীতি আর কালো টাকার বিরুদ্ধে এই মহাযজ্ঞে পূর্ণ উৎসাহে অংশনেওয়ার জন্য। আমি চেয়েছিলাম, দুর্নীতি আর কালো টাকার বিরুদ্ধে যেমন লড়াই চলছে, তেমনিসংসদেও রাজনৈতিক দল আর পলিটিক্যাল ফাণ্ডিং-এর বিষয়েও বিস্তারিত আলোচনা হোক। সংসদচালু থাকলে নিশ্চয়ই আলোচনা হত। যাঁরা প্রকাশ্যে ভ্রষ্টাচার আর কালোটাকাকে সমর্থন করতে পারেন না, তাঁরা সরকারের দোষ-ত্রুটি ধরার জন্য সর্বক্ষণ লেগেথাকেন। এই সরকার জনতা-জনার্দনেরসরকার। আমি সেই গোপন কথাটাই বলছি।সেটা হল এই, যে খবর আমি সাধারণ মানুষের কাছ থেকেই পাচ্ছি। সরকারি ব্যবস্থা থেকে যতখবর আসছে, তার অনেকগুণ বেশি খবর আসছে সাধারণ নাগরিকদের কাছ থেকে। যে সাফল্য আমরাপাচ্ছি, সেটা মূলত জনসাধারণের সচেতনতার কারণে। কেউ কি কল্পনা করতে পারেন, আমাদেরদেশের সচেতন নাগরিক এঁদের মুখোশ খোলার জন্য কতটা ঝুঁকি নিচ্ছেন? আর এইভাবে পাওয়াতথ্য থেকেই বেশি সাফল্য পাওয়া যাচ্ছে। সরকার এইসব অশুভের সঙ্গে লড়াই করতে বদ্ধপরিকর। আপনাদেরসহায়তা পেলে এই লড়াই অনেক সহজ হয়ে যাবে। আমাকে যাঁরা চিঠি পাঠাচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে তৃতীয় একটি দল আছে, যাঁরা সংখ্যায়অনেক। তাঁরা বলছেন, মোদীজী থেমে যাবেন না, ক্লান্ত হয়ে পড়বেন না, যতটা কঠোরপদক্ষেপ নেওয়া সম্ভব, সেটাই নিন। একবার যখন পথে নেমেছেন, তখন লক্ষ্যে পৌঁছতেই হবে।এভাবে যাঁরা লিখেছেন, তাঁদের সকলকে আমি ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কেননা, তাঁদের চিঠিতেবিশ্বাস যেমন আছে, তেমনই আছে আশীর্বাদ। সেই আইন এতদিন ঠাণ্ডাঘরে পড়েছিল। আমরা সেটিকে বার করে এনেছি এবং খুবকঠোরভাবে ‘বেনামী সম্পত্তি আইন’ আমরা বানিয়েছি। আগামী দিনে এই আইন তার ভূমিকা পালনকরবে। দেশহিত এবং জনহিতের জন্য যা করণীয়, সেটাই আমাদের প্রাথমিক কর্তব্য। আমার প্রিয় দেশবাসী, গত ‘মন কী বাত’ অনুষ্ঠানে আমি বলেছিলাম যে, এই সকলঅসুবিধা সত্ত্বেও আমাদের কৃষকরা কঠিন পরিশ্রম করে ফসল রোপনে গত বছরের রেকর্ড ভেঙেদিয়েছেন। ফসল চাষে এটি একটি শুভ সংকেত। দেশের শ্রমিক, কৃষক ও যুবকদের পরিশ্রম একনতুন দিশা দেখাচ্ছে। বিগত সময়ে বিশ্ব অর্থ ব্যবস্থায় অনেক ক্ষেত্রেই ভারত গৌরবেরসঙ্গে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। দেশবাসীর লাগাতার প্রচেষ্টায় বিশ্ব অর্থ ব্যবস্থারবিভিন্ন সূচকে ভারতের উন্নতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। ওয়ার্ল্ড ব্যাঙ্ক-এর ‘ডুয়িং বিজনেসরিপোর্ট’-এ ভারতের স্থান উন্নত হয়েছে। ওয়ার্ল্ড ইকনমিক ফোরাম-এর ‘গ্লোবাল কম্‌পিটিটিভ্‌নেসরিপোর্ট’-এ ভারত ৩২-টি ধাপ উন্নত হয়েছে। একই প্রকারঅন্যান্য কয়েকটি রিপোর্টেও ভারতের দ্রুত উন্নতি ইঙ্গিত করছে। আমার প্রিয় দেশবাসী, এইবার সংসদের অধিবেশনদেশবাসীর মধ্যে উষ্মার সৃষ্টি করেছে। সংসদের গতিবিধি নিয়ে বিভিন্ন ভাবে তাঁদের রাগপ্রকাশ পেয়েছে। রাষ্ট্রপতি এবং উপরাষ্ট্রপতিও এই বিষয়ে তাঁদের উষ্মা প্রকাশকরেছেন। কিন্তু এসবের মধ্যেও কখনো কখনো কিছু কিছু ভালো কথা হয় তখন মন খুশিতে ভরেওঠে। সংসদের হইহল্লার মধ্যেও এমনই একটি ভালো কাজ হয়েছে, যেটা দেশের সাধারণ মানুষেরনজরে আসেনি। ভাই-বোনেরা, আজ এই কথা বলতে আমার আনন্দহচ্ছে, গর্ব হচ্ছে যে দিব্যাঙ্গ ব্যক্তিদের জন্য যে লক্ষ সামনে রেখে সরকার চলছেসেই সম্পর্কিত একটি বিল সংসদে গৃহীত হয়েছে। আমার উদ্দেশ্য ছিল দিব্যাঙ্গ ব্যক্তিরা যেন তাঁদেরনিজের অধিকার এবং সম্মান পান, যেটা তাদের প্রাপ্য। আমার এই প্রচেষ্টাকে আমারদিব্যাঙ্গ ভাই-বোনেরা আরও শক্তি জুগিয়েছেন যখন প্যারা অলিম্পিক্সে চারটি মেডেলজিতে নিয়েছেন। এই জিত কেবল দেশের সম্মানই বাড়ায়নি, তাদের শক্তি দেশবাসীকেআশ্চর্যান্বিত করেছে। দেশের অন্যান্য নাগরিকদের মতো আমাদের এই দিব্যাঙ্গভাই-বোনেরা আমাদের এক অমূল্য সম্পদ ও শক্তি। আমি আজ অত্যন্ত খুশি যে এই আইন পাশহওয়ার ফলে দিব্যাঙ্গদের জন্য চাকরির আরও সুবিধা উপলব্ধ হবে। সরকারী চাকরিরক্ষেত্রে সংরক্ষণের সীমা বাড়িয়ে চার শতাংশ করা হয়েছে। এই আইনে দিব্যাঙ্গদেরশিক্ষা, সুবিধা আর অভিযোগের জন্য বিশেষ ব্যবস্থা রাখা হয়েছে। দিব্যাঙ্গ ব্যক্তিদেরপ্রতি সরকার কতটা সংবেদনশীল, তা আপনারা আন্দাজ করতে পারবেন এই বিষয় থেকে যে বিগতদুই বছরে এদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের তরফ থেকে ৪৩৫০ টি শিবিরের আয়োজন করা হয়েছে।৩৫২ কোটি টাকা খরচ করে ৫,৮০,০০০ দিব্যাঙ্গ ভাই-বোনকে বিভিন্ন প্রকার উপকরণ দেওয়াহয়েছে। রাষ্ট্রপুঞ্জের ভাবনার অনুরূপ সরকার এই নতুন আইন প্রণয়ন করেছেন। দিব্যাঙ্গ ব্যক্তিদের জন্য এমন কয়েকটি শ্রেণি তৈরি করা হয়েছেযাতে প্রথমবার তাঁরা উপযুক্ত সুযোগ ও ন্যায় পাবেন। থ্যালাসেমিয়া, পারকিন্‌সন্সরোগে আক্রান্ত ব্যক্তি এবং বামনদেরও এই শ্রেণির মধ্যে যুক্ত করা হয়েছে। আমার যুব-বন্ধুরা, বিগত কয়েকটি সপ্তাহেখেলার মাঠ থেকে এমন খবর আসছে, যাতে আমরা সকলেই গৌরবাণ্বিত বোধ করছি। ভারতীয় হওয়ারকারণে আমাদের গর্ব হওয়া স্বাভাবিক। ভারতীয় ক্রিকেট দল ইংলণ্ডের বিপক্ষে ৪-০-তেসিরিজ জিতেছে। এতে কিছু যুব খেলোয়াড়ের পারফর্ম্যান্স খুবই প্রশংসনীয়। আমাদের যুবখেলোয়াড় করুণ নায়ার ট্রিপল সেঞ্চুরী করেছেন। কে.এল.রাহুল ১৯৯ রানের ইনিংস খেলেছেন।টেস্ট অধিনায়ক বিরাট কোহলি কেবল ভালো ব্যাটিং-ই করেননি, ভালো নেতৃত্বও দিয়েছেন।ভারতীয় ক্রিকেট দলের অফ্‌স্পিন বোলার রবিচন্দ্রণ অশ্বিন-কে আই.সি.সি. ২০১৬-র‘ক্রিকেটার অব দ্য ইয়ার’ এবং ‘বেস্ট টেস্ট ক্রিকেটার’ নির্বাচিত করেছেন। এঁদের সবাইকেআমার অনেক অনেক অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। হকিতেও ১৫ বছর পরে খুব ভালো খবরপাওয়া গেছে। আমিক্রিকেট এবং হকি দলের সকল খেলোয়াড়কে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। ই-গভর্ন্যান্স,এম-গভর্ন্যান্স, বৈদ্যুতিন পদ্ধতিতে সরকারি পরিষেবা, সাইবার নিরাপত্তা, দক্ষতাবৃদ্ধি সহ প্রযুক্তিগত বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে সহযোগিতাপ্রসারের ব্যবস্থা রয়েছে সম্পাদিত এই চুক্তিটিতে। ‘প্রগতি’র মঞ্চে ১৯তম পর্যালোচনা বৈঠকে আজ নেতৃত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ডাক পরিষেবা সম্পর্কিত বিভিন্ন অভিযোগের নিষ্পত্তিতে গৃহীত ব্যবস্থা সম্পর্কে খোঁজখবর নেন তিনি। ডাক পরিষেবার গুরুত্ব যে আবার বৃদ্ধি পেতে চলেছে সে কথারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। ডাক পরিষেবায় ত্রুটি বা গাফিলতির জন্য দায়ী আধিকারিকদের বিরুদ্ধে কি ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কে খোঁজে নেওয়ার পাশাপাশি, কাজের ধারা ও পদ্ধতির ক্ষেত্রে কি ধরনের পরিবর্তন ঘটানো হয়েছে সে সম্পর্কেও জানতে চান তিনি। অপরাধ এবং অপরাধীদের চিহ্নিত করার ব্যবস্থা ও নেটওয়ার্ক সম্পর্কেও বিশেষভাবে খোঁজখবর নেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি ২রা এবং ৩রা জানুয়ারি কর্নাটক সফর করবেন। শ্রী শুট্টুর মঠের জগদ্‌গুরু ড. শ্রী শিবরাত্রি রাজেন্দ্র মহাস্বামীজীর শতবর্ষ উদ্‌যাপন অনুষ্ঠানেও প্রধানমন্ত্রী অংশ নেবেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী ৩রা জানুয়ারি মাইশোর বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় বিজ্ঞান কংগ্রেসের ১০৩তম অধিবেশন উদ্বোধন করবেন। তিনি টুমকুর-এ নতুন হেলিকপ্টার তৈরির একটি ইউনিটের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপন করবেন। রাজস্থানের সুরতগড় থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের দেশব্যাপী `মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড প্রকল্প`-এর সূচনা করে তিনি ভাষণ দিচ্ছিলেন। মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড প্রকল্পটি সুজলা, সুফলা চাষের জমির স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে একটি পদক্ষেপ বলে তিনি মন্তব্য করেন। নিয়মিত মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এক শ্রেণীর নতুন শিল্পোদ্যোগীরা ছোট শহরেও মাটি পরীক্ষার ব্যবস্থা গড়ে তুলতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড এবং সম্প্রতি শুরু হওয়া `বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও`-এর মতো প্রকল্পগুলি গোটা দেশের জন্যই যথেষ্ট প্রাসঙ্গিক। তাই, তিনি সম্প্রতি হরিয়ানায় `বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও` প্রকল্পের সূচনা করেছেন এবং এখন রাজস্থানে `মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড প্রকল্প`টির সূচনা করছেন। তিনি বলেন, `কন্যা ও ধরিত্রী` উভয়কেই রক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি বলেন, জলের সুপ্রতুলতা ও ঘাটতি দুটোই সমান বিপজ্জনক আর তাই, ভালো কৃষিকাজের চাবিকাঠি হল `বিন্দু বিন্দু জল`। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, নিতি আয়োগের আওতায় প্রতিটি রাজ্যকেই তিনি কৃষি পরিকল্পনা নিয়ে এগিয়ে আসার জন্য বলেছেন। আগামী তিন বছরে দেশে ১৪ কোটি মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড প্রদানের পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে। প্রকল্পের সূচনা অনুষ্ঠানে রাজস্থানের রাজ্যপাল শ্রী কল্যাণ সিং, মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী বসুন্ধরা রাজে; পাঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী প্রকাশ সিং বাদল ও কেন্দ্রীয় কৃষিমন্ত্রী শ্রী রাধামোহন সিংও উপস্থিত ছিলেন। রাজধানীতে ভারত-আফ্রিকা ফোরাম শীর্ষ বৈঠকের অঙ্গ হিসেবে আফ্রিকার বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে পৃথক পৃথক বৈঠকে আজ মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। জিম্বাবোয়ের প্রেসিডেন্ট এবং আফ্রিকান ইউনিয়নের চেয়ারম্যান মিঃ রবার্ট মুগাবের সঙ্গে এক বৈঠকে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্কার এবং সন্ত্রাসবাদের হুমকি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী আলাপ-আলোচনা করেন। বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয় সম্পর্কে তাঁদের মধ্যে মতবিনিময় হয়। ভারত ও জিম্বাবোয়ের মধ্যে ঘনিষ্ঠ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের কথা প্রধানমন্ত্রী বৈঠকে তুলে ধরেন। দু’দেশের মধ্যে আন্তরিক সম্পর্ক এবং ক্রমপ্রসারমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের বিষয়গুলি আলোচনাকালে উঠে আসে। কৃষি, তথ্যপ্রযুক্তি, দক্ষতা উন্নয়ন, সাইবার নিরাপত্তা এবং নৌ-নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলিও দুই নেতার আলোচ্যসূচিতে স্থান পায়। অন্যদিকে, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সোয়াজিল্যান্ডের রাজার নেতৃত্ব ও দৃষ্টিভঙ্গির বিশেষ প্রশংসা করেন এবং তাঁর দেশের উন্নয়নে ভারত সহযোগিতায় প্রস্তুত বলে তাঁকে অবহিত করেন। বেনিন-এর প্রেসিডেন্ট ডঃ বোনি ইয়াই-র সঙ্গেও বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। দু’দেশের মধ্যে ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক সম্পর্ক এবং কৃষি বিকাশ, বিদ্যুৎ উৎপাদন, জল সরবরাহ এবং পরিবহণ সহ সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্র সম্পর্কে তাঁরা মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী বৈঠক করেন নাইজেরিয়ার প্রেসিডেন্ট মিঃ মোহাম্মাদু বুহারি-র সঙ্গেও। তেল অনুসন্ধান, প্রতিরক্ষা সহযোগিতা এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্কার সহ বিভিন্ন বিষয় দুই নেতার আলোচনাকালে উঠে আসে। কেনিয়ার প্রেসিডেন্ট মিঃ উহুরু কেনিয়াট্টা-র সঙ্গে বৈঠকে স্বাস্থ্য পরিচর্যা, পরিকাঠামো, দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য এবং অর্থনৈতিক সম্পর্কের মতো বিষয়গুলি নিয়ে কথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দু’দেশের মধ্যে ঐতিহাসিক সম্পর্ক এবং কেনিয়ায় ভারতের প্রভাব সম্পর্কেও তাঁদের মধ্যে আলোচনা হয়। সন্ত্রাসবাদ এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্কার প্রসঙ্গেও দুই নেতা কথাবার্তা বলেন। সন্ত্রাসবাদ, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার এবং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের শাসন ব্যবস্থা সম্পর্কিত প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কার সহ বিভিন্ন বিষয় দুই নেতার আলোচ্যসূচিতে স্থান পায়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৪ ও ৫ই মার্চ গুজরাট সফর করবেন। এছাড়াও, হাসপাতালের শিক্ষানবিশ ছাত্রছাত্রী এবং অধ্যাপকদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। এই প্রকল্পের রঞ্জিত সাগর কৃষি সেচ প্রকল্প এবং নয়ারি সেচ প্রকল্প জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। রাজকোট-কানালুস রেললাইন ডবল করার কাজেরও সূচনা করবেন। আমেদাবাদ মেট্রোর যাত্রীদের জন্য অভিন্ন যাতায়াতের কার্ড প্রকাশ করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী, ভস্ত্রল গাম স্টেশন থেকে মেট্রো রেলের যাত্রার সূচনা ও ট্রেন সফর করবেন। উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ফেব্রুয়ারি মাসে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আমেদাবাদ মেট্রো রেল প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের অনুমোদন দেওয়া হয়। এই মেট্রো প্রকল্পের ফলে যোগাযোগ ব্যবস্থায় উন্নতির পাশাপাশি, সফরের সময় সাশ্রয় হবে এবং শহরাঞ্চলের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হবে। এই চিকিৎসা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে – মহিলা, শিশু ও সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল, ক্যান্সার হাসপাতাল, চক্ষু হাসপাতাল ও দন্ত হাসপাতাল। এই হাসপাতালগুলির ফলে আমেদাবাদে স্বাস্থ্য পরিচর্যার মান কয়েকগুণ বাড়বে। সেইসঙ্গে, সাধারণ মানুষ গুণগত মানের স্বাস্থ্য পরিষেবাও পাবেন। এছাড়াও, তিনি আনন্দ-গোধরা রেললাইন ডবল করার কাজের শিলান্যাস করবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী জনসভায় ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী নব-নির্মিত সিভিল হাসপাতাল ঘুরে দেখবেন এবং ফিতে কেটে ১,২০০ রোগী শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালের উদ্বোধন করবেন। আমেদাবাদে নব-নির্মিত ক্যান্সার ও চক্ষু হাসপাতালও তিনি ঘুরে দেখবেন। সেখানে তিনি অন্নপূর্ণা ধাম ট্রাস্ট সফর করবেন এবং শিক্ষা ভবন তথা বিদ্যার্থী ভবনের শিলান্যাস করবেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। এরপর শ্রী মোদী প্রধানমন্ত্রী শ্রমযোগী মান-ধন যোজনার সূচনা করবেন। সুফলভোগীদের অনলাইনে অর্থ হস্তান্তরের মাধ্যমে এই যোজনার আওতায় প্রধানমন্ত্রী অসংগঠিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের পেনশন প্রকল্পের সূচনা করবেন। এই প্রকল্পের মাধ্যমে ৬০ বছর বয়সী শ্রমিকরা মাসিক ৩ হাজার টাকা নিশ্চিত পেনশন পাবেন। মনে করা হচ্ছে, আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে কমপক্ষে ১০ কোটি অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিক এই প্রকল্পের ফলে উপকৃত হবেন। “ ওড়িশার আঙ্গুল জেলায় বাস দুর্ঘটনার খবর মর্মবিদারক । এইনতুন মন্ত্রিসভা যে উত্তরপ্রদেশকে উত্তমপ্রদেশ করে গড়ে তোলার লক্ষ্যে চেষ্টার কোনত্রুটি রাখবেন না, এই আস্থা ও বিশ্বাস আমার রয়েছে সন্দেহাতীতভাবেই। উন্নয়নের গতি এখনএক রেকর্ড সৃষ্টি করবে। আমাদেরমূল মন্ত্র ও উদ্দেশ্যই হল বিকাশ তথা উন্নয়ন। উত্তরপ্রদেশের উন্নয়নের সঙ্গে যুক্তসমগ্র ভারতের উন্নয়নের স্বার্থ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৪ জানুয়ারীতে মনিপুর ও অসমে সফর করবেন। মনিপুরে প্রধানমন্ত্রী একটি প্রকল্পের উদ্বোধন ও ভিত্তিপ্রস্তর স্হাপন করবেন। মোরে’তে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট, ডোলাইথাবিতে বাঁধ প্রকল্প, সায়োমবাঙে এফসিআই-এর মজুত ভান্ডার, থাংগালসুরুনগন্ডে কয়েকটি জল সরবরাহ প্রকল্প উদ্বোধনের জন্য শ্রী মোদী ফলক উন্মোচন করবেন। শিলচর ও ইম্ফলের মধ্যে ৪০০ কেভির ডবল সার্কিট লাইনটি তিনি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। ইম্ফলে ধনমঞ্জুরি বিশ্ববিদ্যালয়ে পরিকাঠামো উন্নয়নে ও ক্রীড়া ব্যবস্হা প্রকল্পের উদ্বোধনী ফলকও প্রধানমন্ত্রী স্হাপন করবেন। এরপর তিনি ইম্ফল পূর্ব জেলার হপ্তাকাঙজেইবুং-এর জনসমাবেশে ভাষণ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলাযোজনার ১০০-র বেশি সুফলগ্রহীতার সঙ্গে মঙ্গলবার তাঁর বাসভবনে এক আলাপচারিতায় মিলিতহলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী সঙ্গেআলাপচারিতাকালে, এলপিজি ব্যবহারের মধ্য দিয়ে কিভাবে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাত্রায়উন্নতি ঘটেছে সে কথা ব্যাখ্যা করেন সুফলগ্রহীতারা। দৈনন্দিন জীবনের বিভিন্ন বিষয় ওসমস্যা নিয়ে কথা বলার জন্য তাঁদের উৎসাহ যোগান প্রধানমন্ত্রী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র-ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ফোরামের চেয়ারম্যান মিঃ জন চেম্বার্স আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে গান্ধীনগরে দেখা করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আগেকার বৈঠকগুলির কথা স্মরণ করে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমবর্ধনমান দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ককে স্বাগত জানান। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের একই ধরণের কর্মসূচি গ্রহণের প্রবণতা বেড়েছে এবং দু-দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্ব জোরালো হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। আজমুম্বাইতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নৌ-সাবমেরিন আইএনএস কালভরি-কে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গকরলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই সাবমেরিনটিকে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’কর্মসূচির সাফল্যের এক বড় দৃষ্টান্ত বলে বর্ণনা করেন তিনি। এজন্য দেশবাসীকেঅভিনন্দনও জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রীমোদী বলেন, ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক যে দ্রুত প্রসারলাভ করছে, তার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত হল এই সাবমেরিনটি। ভারতীয় নৌ-বাহিনীর শক্তিবৃদ্ধিতে এই ডুবোজাহাজটি বিশেষভাবে সাহায্য করবে বলে মনে করেন তিনি। এর নির্মাণ ওউৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত সকলেরই ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। একুশেরশতকটিকে এশিয়ার শতক বলে চিহ্নিত করা হয় – এই প্রসঙ্গের অবতারণা করে শ্রী নরেন্দ্রমোদী বলেন, একবিংশ শতাব্দীর উন্নয়ন ধারা যে ভারত মহাসাগরের মধ্য দিয়েই বয়ে চলেছে,এ বিষয়ে কোন সংশয় নেই। এই কারণেই কেন্দ্রীয় সরকারের নীতিতে একটি বিশেষ স্থানঅধিকার করে রয়েছে ভারত মহাসাগর। তাঁর মতে, ঠিক এই কারণেই আধুনিক সাজে সজ্জিত ভারতীয় নৌ-বাহিনীসংশ্লিষ্ট অঞ্চলে শান্তি ও স্থিতিশীলতার প্রসারে এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করে চলেছে। শ্রীমোদী বলেন, মহাসাগরের অন্তর্নিহিত সম্পদ ও সম্ভাবনা আমাদের জাতীয় বিকাশ প্রচেষ্টায়শক্তি সঞ্চার করে। প্রধানমন্ত্রীবলেন, সমগ্র বিশ্ব জগতই যে এক ও অভিন্ন পরিবার, এই নীতি ও মানসিকতায় বিশ্বাস করেভারত। আর ঠিক এই কারণেই, শান্তি ওস্থিতিশীলতার পথে ভারতের সঙ্গে একসাথে এগিয়ে যেতে আগ্রহী বিশ্বের অন্যান্য দেশ। প্রধানমন্ত্রীবলেন, গত তিন বছরে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সম্পর্কিত পরিবেশ ও পরিস্থিতি দ্রুতপরিবর্তিত হচ্ছে। আইএনএস কালভরি-র নির্মাণকালে যে ক্ষমতা ও দক্ষতার পরিচয় পাওয়াগেছে, তা নিঃসন্দেহে ভারতের এক বিশেষ সম্পদ। ভাষণদানকালেপ্রসঙ্গত তিনি উল্লেখ করেন যে ‘এক পদ, এক পেনশন’ নীতি চালু করার যে বিষয়টিদীর্ঘদিন ধরে মুলতবি ছিল, তার নিরসনে তাঁর সরকার যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, বাস্তবেরঘটনাই তার প্রমাণ। প্রধানমন্ত্রীবলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি এবং দেশের সশস্ত্র বাহিনীগুলির শৌর্য ও সাহসিকতাএকথাই প্রমাণ করেছে যে জম্মু ও কাশ্মীরে যে যুদ্ধকালীন পরিস্থিতিসৃষ্টি করেছিল সন্ত্রাসবাদীরা, তা পুরোপুরি ব্যর্থ হয়েছে। ভারত-মার্কিন সম্পর্ককে আরও নিবিড় করে তোলার লক্ষ্যে মার্কিনকংগ্রেসের ঘনিষ্ঠ সমর্থনের বিশেষ প্রশংসাও করেন তিনি। দ্বিপাক্ষিক অংশীদারিত্ব এবং পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্নবিষয়ে শ্রী মোদী আলোচনা ও মত-বিনিময় করেন মার্কিন প্রতিনিধি দলের সঙ্গে। স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের ওপর সরকারের জোর দেবার কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন সকলের সুস্বাস্থ্য এবং স্বাস্থ্য পরিষেবা সকলের জন্য সহজলভ্য করে তুলতেই এই উদ্যোগ। রোগ নিয়ন্ত্রণ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, আগামী ২০২৫ সালের মধ্যে সরকার যক্ষ্মা রোগ নিয়ন্ত্রণ করতে বদ্ধপরিকর। “এজন্য আমরা প্রযুক্তিগত এবং আর্থিক সহায়তা দিচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী বুধবার ‘প্রগতি’র মঞ্চে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় দপ্তরের কাজকর্ম এবংকর্মসূচির অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। দূরসঞ্চার ক্ষেত্রের কাজকর্ম এবং ক্ষোভ ওঅভিযোগ নিরসনে গৃহীত ব্যবস্থার বিষয়গুলিও তিনি এদিন খতিয়ে দেখেন। দপ্তরের বিরুদ্ধেঅধিকাংশ অভিযোগই পরিষেবার ঘাটতি, সংযোগে ব্যাঘাত এবং ল্যান্ডলাইন টেলিফোন অচলথাকার ঘটনাকে কেন্দ্র করে। এই প্রসঙ্গে কেন্দ্রীয় দূরসঞ্চার দপ্তরের সচিব অভিযোগনিরসনে যে সমস্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে তার একটি সার্বিক চিত্র তুলে ধরেনপ্রধানমন্ত্রীর কাছে। প্রয়োজনে প্রযুক্তিগত পন্থা-পদ্ধতি খুঁজে বের করার ওপরও শ্রীমোদী বিশেষ জোর দেন। ‘প্রধানমন্ত্রীআবাস যোজনা (শহরাঞ্চল)’-এর অগ্রগতির বিষয়টিও এদিন খতিয়ে দেখেন প্রধানমন্ত্রী।আগামী ২০২২ সালের মধ্যে সকলের জন্য বাসস্থান নিশ্চিত করার লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়সরকারের অঙ্গীকারের কথা পুনর্ব্যক্ত করেন তিনি। এই লক্ষ্যে কৌশলগত উপায়, নির্দিষ্টমেয়াদের পরিকল্পনা এবং রূপরেখা নিয়ে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রীরাজ্যগুলির কাছে। এক্ষেত্রেও কাজের গতি ও মান আরও উন্নত করে তুলতে আধুনিকতমপ্রযুক্তির আশ্রয় গ্রহণ করার পরামর্শ দেন তিনি। বাণিজ্যিককাজকর্মকে সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে বর্তমান পরিস্থিতির পর্যালোচনার আর্জি জানানপ্রধানমন্ত্রী কেন্দ্রীয় সরকারের সবক’টি দপ্তরের সচিব এবং রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবদেরকাছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের এ সম্পর্কিত প্রতিবেদন অনুযায়ী নির্দিষ্ট মাপকাঠি অনুসরণের নির্দেশদেন প্রধানমন্ত্রী। প্রতি সপ্তাহে কাজের অগ্রগতি তিনি খতিয়ে দেখতে বলেন কেন্দ্রীয়সরকারের পদস্থ আধিকারিকদের। “লোকসভায়মাতৃত্বকালীন সুযোগ-সুবিধাদান সম্পর্কিত বিলটি পাশ হওয়ার ঘটনা দেশে নারীরনেতৃত্বাধীন উন্নয়ন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে এক দিকচিহ্ন বিশেষ। মাতৃত্বকালীনসুযোগ-সুবিধাদান সম্পর্কিত সংশোধনী বিলটিতে মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্য ও কল্যাণকেনিশ্চিত করে তোলার কথা বলা হয়েছে। মাতৃত্বকালীন ছুটি বৃদ্ধি পাওয়া নিঃসন্দেহে একটিস্বাগত পদক্ষেপ। ইসরোর বিজ্ঞানীদের সঙ্গে আজ কথাবার্তাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। আজ স্টকহোমে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, ডেনমার্কের প্রধানমন্ত্রী লার্সলোক্কে রাসমুসেন, ফিনল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী জুহা সিপিলা, আইসল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী কাট্রিন জ্যাকবসদোত্তির নরওয়ের প্রধানমন্ত্রী এরনা সোলবার্গ এবং সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী স্টিফেন লফভেন এক শীর্ষ বৈঠকে মিলিত হন। অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশ এবং নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণে মুক্ত বাণিজ্য ব্যবস্থা যে একটি অনুঘটকের ভূমিকা পালন করতে পারে, সে প্রশ্নে সহমত প্রকাশ করেন সকল প্রধানমন্ত্রী। এই প্রসঙ্গে নির্মল প্রযুক্তি, সামুদ্রিক সমস্যার সমাধান, বন্দর আধুনিকীকরণ, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, স্বাস্থ্য, জীবন বিজ্ঞান এবং কৃষি সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে উত্তর ইউরোপ এবং উত্তর আটলান্টিকের দেশগুলি যে সমাধান প্রচেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে তার কথাও উল্লেখ করা হয়। ভারত সরকারের স্মার্টনগরী কর্মসূচিটিকে সহায়তাদানের লক্ষ্যে ঐ দেশগুলি যে নিরন্তর নগরায়ন প্রকল্পের উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, তাকে বৈঠকে স্বাগত জানানো হয়। শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণকারী প্রধানমন্ত্রীরা বিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে, ভারত সহ এই দেশগুলির যে বিশেষ দক্ষতা ও ক্ষমতা রয়েছে, তার সুযোগ গ্রহণ করে বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিস্থিতিকে আরও উন্নত করে তোলা যেতে পারে এবং এর ফলে লাভবান হবে সংশ্লিষ্ট সবকটি দেশই। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে হিংসা ও সন্ত্রাস যে একটি বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ সেই প্রশ্নে সহমত প্রকাশ করেন সকল প্রধানমন্ত্রীই। রাষ্ট্রসংঘের প্রতি সমর্থন জানিয়ে সেখানকার মহাসচিবের সংস্কার প্রচেষ্টাকেও সাধুবাদ জানানো হয়। বিশুদ্ধ জ্বালানি উৎপাদনের প্রসঙ্গে বিশেষত, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি শক্তির প্রসারে সকল রকম প্রচেষ্টা নিরন্তর রাখার সপক্ষে মত প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রীরা। অন্যদিকে, নারী ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে এবং আর্থ-সামাজিক তথা রাজনৈতিক জীবনে মহিলাদের পূর্ণ ও অর্থবহ অংশগ্রহণ যে অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের একটি পূর্বশর্ত সে বিষয়েও সহমত পোষণ করা হয় এদিনের বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রীরা একযোগে বলেন যে, সংশ্লিষ্ট দেশগুলির মধ্যে বলিষ্ঠ সহযোগিতার বাতাবরণ গড়ে তোলার মাধ্যমে উদ্ভাবন প্রচেষ্টা, অর্থনৈতিক অগ্রগতি, নিরন্তর সমাধান প্রচেষ্টা এবং পারস্পরিক কল্যাণসাধক বাণিজ্য ও বিনিয়োগ পরিস্থিতির উদ্ভব সম্ভব। এই ধরণের উদ্যোগের ছবি ও ভিডিও রেকর্ডিং পেশকরার জন্য জনসাধারণকে আহ্বান জানিয়েছেন তিনি। তিনি দুটি জায়গায় একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করবেন। কালবুর্গিতে কর্ণাটকের জনগণের সুবিধার্থে প্রধানমন্ত্রী শক্তি, স্বাস্হ্য, শিক্ষা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রের উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করবেন। এরমধ্যে রয়েছে : কর্ণাটকের স্বাস্হ্য পরিষেবার আরও উন্নয়নের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশ্যে বেঙ্গালুরুর ইএসআইসি হাসপাতাল এবং মেডিক্যাল কলেজ উৎসর্গ করবেন। তিনি হুব্বাল্লির কেআইএমএস-এর সুপার স্পেশালিটি ব্লকের-ও উদ্বোধন করবেন। শ্রী মোদী বিপিসিএল-এর ডিপো রাইচুর থেকে কালবুর্গিতে স্হানান্তরিত করার জন্য শিলান্যাস করবেন। এছাড়াও তিনি বেঙ্গালুরুর ইনকাম ট্যাক্স অ্যাপিলেট ট্রাইবুনাল টার্মিনাল জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবেন। তিনি বেঙ্গালোর বিশ্ববিদ্যালয়ের উত্তরপূর্ব ভারতের পড়ুয়াদের জন্য উইমেন্স হস্টেলেরও উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্পগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের ‘ইজ অফ লিভিং’ কর্মসূচিকে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে গড়ে তোলা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী কালবুর্গিতে আয়ুষ্মান ভারতের সুবিধাপ্রাপকদের সঙ্গেও মতবিনিময় করবেন। তামিলনাড়ুর কাঞ্চিপুরমে প্রধানমন্ত্রী সড়ক, রেল এবং শক্তি ক্ষেত্রে একগুচ্ছ প্রকল্পের সূচনা করবেন। এই প্রকল্পগুলি রাজ্যের সড়ক এবং রেল পরিবহন পরিকাঠামোকে উন্নত করবে। এরফলে তামিলনাড়ুর জনগণ উন্নত, দ্রুত এবং সস্তার পরিবহনের সুযোগ পাবেন। তামিলনাড়ুর মহাসড়ক পরিকাঠামোর আরও উন্নতির লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় সড়ক ৪৫ সি-র বিক্রাবন্দি- শেঠিয়াঠাপু শাখা, শেঠিয়াঠাপু- চোলোপুরম শাখা এবং চোলোপুরম- থান্জাভুরম শাখায় চার লেনের সড়কের শিলান্যাস করবেন। তিনি জাতীয় সড়ক ৪-এর কারাইপট্টি-ওলাজাপেট শাখার ৬ লেনের সড়কেরও শিলান্যাস করবেন। জাতীয় সড়ক ২৩৪কে মজবুত করার জন্য ক্যারেজওয়ে এবং কালভার্টগুলিকে চওড়া করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শিলান্যাস করবেন। তিনি জাতীয় সড়ক ৩৮১-র অবিনাশী-তিরুপুর-অবিনাশীপালায়াম শাখার ৪ লেন এবং ক্যারেজওয়েকে মজবুত করার প্রকল্পটি জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবেন। প্রধানমন্ত্রী ইরোড-কারুর-তিরুচিরাপল্লী এবং সালেম-কারুর-ডিঙ্গিগুল শাখার বৈদ্যুতিকরণ জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবেন। এই বৈদ্যুতিকরণের ফলে গ্রীন হাউস গ্যাস নির্গমন হ্রাস পাবে এবং যাত্রী ও পণ্য পরিবহনের সময় কমে যাবে। প্রধানমন্ত্রী এন্নোরের এলএনজি টার্মিনালটিও জাতির উদ্দেশ্যে উৎসর্গ করবেন। ৫ এমএমটিপিএ ক্ষমতাসম্পন্ন এন্নোর এলএনজি টার্মিনালটি তামিলনাড়ু এবং পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলির এলএনজি গ্যাসের চাহিদা পূরণ করবে। এছাড়াও প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে চেন্নাই-এর ডঃ এমজিআর জানকি কলেজ অফ আর্টস অ্যান্ড সায়েন্স ফর উইমেন্স-এ ডঃ এমজি রামাচন্দ্রনের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করবেন। তাঁকে ভারতরত্নে সম্মানিত করা হয়। এরফলে, প্রবীণ নাগরিকরা মাসে ১০ হাজার টাকা পর্যন্ত পেনশন পেতে পারেন। চলতি বছরের মার্চ মাস পর্যন্ত এই প্রকল্পে ২ লক্ষ ২৩ হাজার প্রবীণ নাগরিক যোগ দিয়ে উপকৃত হয়েছেন। এলআইসি সংস্হা পিএমভিভিওয়াই প্রকল্পের আওতায় প্রবীণ নাগরিকদের জমানো অর্থের ওপর বার্ষিক ৮ শতাংশ হারে ১০ বছর ধরে একটি নির্দিষ্ট অর্থের পেনশন প্রদান করছে। অত্যাধুনিক প্রযুক্তিতে গড়ে তোলা ওড়িশার পারাদীপ শোধনাগারটি রবিবার জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক বিশাল সমাবেশে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের সঙ্গে সম্পর্কিত এই ধরনের একটি সরকারি কর্মসূচিতে ব্যাপক জনসমাবেশ দেখে তিনি আপ্লুত। এখন থেকে যুবসমাজের কাছে পৌঁছে যাবে কর্মসংস্থানের সুযোগ এবং রান্নার কাজে জ্বালানি কাঠ ব্যবহারকারী দেশের দরিদ্র মহিলাদের জন্য সম্প্রসারিত হবে এল পি জি-র সুযোগ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ এবং ‘মুদ্রা’ কর্মসূচির মাধ্যমে উপকৃত হচ্ছেন দেশের যুব ও তরুণ সমাজ। কর্মীদের বর্তমান বেতন হার অনুযায়ী অবসরপ্রাপ্ত কর্মীদের পেনশন ও চিকিৎসা বাবদ বছরে ব্যয় হবে ১৩৪ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার মতো। দেশে খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্য পূরণে বহু বছর ধরেই কাজ করে আসছে ভারতীয়খাদ্য নিগম বা এফসিআই। তাঁর দুর্লঙ্ঘ্যবাধা অতিক্রম করার ক্ষমতা ও সংকল্প ছিল বিশ্ববাসীর কাছে এক প্রেরণার উৎস। তাঁরমৃত্যু এক দুঃখবহ ঘটনা। যে সমস্ত বিষয়ে তিনি পথ প্রদর্শন করে গেছেন, তা বিশ্বকে আমাদেরজন্য উন্নততর করে তুলেছে। সকলের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি হল এই যোজনার আরেকটি বৈশিষ্ট্য। এই লক্ষ্যে সরকারের পক্ষ থেকে প্রায় ১ লক্ষ রাজমিস্ত্রিকে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। তথ্যপ্রযুক্তি-ভিত্তিকবহু উদ্দেশ্যসাধক ‘প্রগতি’র মঞ্চে সক্রিয় প্রশাসন এবং কর্মসূচির সময়োচিত রূপায়ণসম্পর্কে এক আলোচনা ও মতবিনিময় অনুষ্ঠানে আজ নেতৃত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। এরআগে, ‘প্রগতি’র মঞ্চে অনুষ্ঠিত ২২টি বৈঠকে ৯.৩১ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগে ২০০টিকেন্দ্রীয় প্রকল্প ও কর্মসূচির পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। ১৭টি ক্ষেত্রেনাগরিকদের ক্ষোভ ও অভিযোগ সম্পর্কিত সমস্যাগুলির নিষ্পত্তিতে গৃহীত ব্যবস্থাসম্পর্কেও তিনি খোঁজখবর নেন। আজ‘প্রগতি’র মঞ্চে ২৩তম বৈঠকে ক্রেতাসাধারণের অভিযোগ সম্পর্কিত বিষয়গুলির মোকাবিলায়গৃহীত ব্যবস্থাদির অগ্রগতির বিষয়টি খতিয়ে দেখেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহায়তা রূপায়ণে ভারতীয়বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ (এ এ আই) এবং ফ্রান্সের অসামরিক বিমান পরিবহণ কর্তৃপক্ষের(ডি জি এ সি) মধ্যে এক মউ স্বাক্ষরের প্রস্তাবে বুধবার অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এদিন অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার এইবৈঠকটি। প্রযুক্তিগত সহযোগিতা বিনিময় কর্মসূচি ভারতীয় বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষেরআধিকারিকদের দক্ষতা ও পারদর্শিতা বৃদ্ধির কাজে বিশেষভাবে সহায়ক হবে বলে মনে করাহচ্ছে। সেখানে মোবাইল ব্যাঙ্কিং এবং ইউপিআই ও ই-ওয়ালেট সহবিভিন্ন বিভিন্ন মোবাইল অ্যাপ্লিকেশনস্‌-এর সাহায্যে কিভাবে প্রাত্যহিক লেনদেন করাযায়, সে সম্পর্কে কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। নগদ অর্থ ছাড়াইলেনদেনের প্রক্রিয়াটি সম্পর্কে আধিকারিকরা কর্মীদের হাতে-কলমে প্রশিক্ষণ দেন।কর্মীরা যাতে তাঁদের মোবাইল ফোন ব্যবহার করেই লেনদেনের কাজ সেরে ফেলতে পারেন, সেসম্পর্কে তাঁদের উদ্বুদ্ধ করা হয় ঐ কর্মশালায়। রাজধানীর তিলক মার্গে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সমীক্ষা বিভাগ (এএসআই)-এর নতুন সদর দপ্তর ভবন ‘ধারোহার ভবন’-এর আজ (১২ই জুলাই, ২০১৮) উদ্বোধন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি তাঁর ভাষণে বলেন যে গত প্রায় ১৫০ বছর ধরে ভারতীয় পুরাতত্ত্ব সমীক্ষা বিভাগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি কাজের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। দেশের ইতিহাস এবং সমৃদ্ধ পুরাতাত্ত্বিক ঐতিহ্য যে আমাদের গর্ব একথাও স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন যে স্থানীয় ইতিহাস এবং নিজেদের শহর, মফঃস্বল তথা অঞ্চলগুলির পুরাতাত্ত্বিক তাৎপর্য সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকার জন্য সকলকেই আগ্রহী হতে হবে। এমনকি, বিদ্যালয় পাঠ্যক্রমেও স্থানীয় পুরাতত্ত্বের তাৎপর্যের বিষয়টি অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। প্রসঙ্গত, পর্যটনের সঙ্গে যুক্ত প্রশিক্ষিত গাইডদের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে তাঁরা সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ইতিহাস ও ঐতিহ্যের সঙ্গে সুপরিচিত। ভারতের মহান ঐতিহ্যগুলিকে গর্ব ও আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে বিশ্ব সমক্ষে তুলে ধরা উচিৎ বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। উল্লেখ্য, ভারতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগের নতুন সদর দপ্তর ভবনটিকে বিদ্যুৎ সাশ্রয়ী আলো এবং বৃষ্টির জলের পুনর্ব্যবহারের ব্যবস্থা সহ নানা অত্যাধুনিক প্রযুক্তিগত সাজসরঞ্জামে সাজিয়ে তোলা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার ভারত-নেপাল সীমান্তের মেচি নদীরওপর নতুন সেতুর নির্মাণকার্য শুরু করার জন্য খরচ ভাগাভাগি, সময়সূচি ও নিরাপত্তাবিষয় নিয়ে রূপায়ণ ব্যবস্থার কাজ শুরু করার ক্ষেত্রে ভারত ও নেপালের মধ্যে স্বাক্ষরহতে যাওয়া সমঝোতা স্মারকের (মউ) অনুমোদন দিল| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আয়কর ন্যায়পাল ও অপ্রত্যক্ষ কর ন্যায়পাল প্রতিষ্ঠান দুটি তুলে দেওয়ার প্রস্তাবে সায় দেওয়া হয়েছে। তবে, প্রতিষ্ঠানটি নিজের উদ্দেশ্য পূরণ করতে ব্যার্থ হয়েছে। অন্যদিকে, অভিযোগ দাখিলের নতুন নতুন প্রতিষ্ঠানে কাজ দ্রুত এগোচ্ছে। এখানেবক্তব্য রাখার জন্য আমি আপনাদের প্রত্যেককে ধন্যবাদ জানাই। আপনাদেরচিন্তাভাবনা আজকের এই উৎক্ষেপণ মুহূর্তের আবেগ-অনুভূতিরই এক সার্থক প্রতিধ্বনি। যেদেশগুলি একই চিন্তাভাবনার শরিক তাদের মধ্যে সহযোগিতা প্রসারের ক্ষেত্রে আকাশই যেশেষ সীমা নয়, একথা আজ প্রমাণিত দক্ষিণ-এশীয় উপগ্রহের উৎক্ষেপণের ঘটনায় । ‘সকলকেসঙ্গে নিয়ে সকলের জন্য উন্নয়ন’ – এই নীতিটি দক্ষিণ এশিয়ায় সহযোগিতা ওকর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে এক আলোকবর্তিকার কাজ করে যাবে। দক্ষিণ-এশীয়উপগ্রহের উৎক্ষেপণ উদযাপনের এই মুহূর্তে আপনাদের সকলকে সঙ্গে পাওয়ার জন্য আমি আরওএকবার ধন্যবাদ জানাই আপনাদের। আমিধন্যবাদ জানাই এই চিন্তাভাবনাকে বাস্তবে মূর্ত করে তোলার কাজে আপনাদের নিরন্তর ওবলিষ্ঠ সমর্থন লাভের জন্য। ফ্রান্সের প্রেসিডেন্টের কূটনৈতিক পরামর্শদাতা মিঃ জ্যাকুইস অডিবার্ট বুধবার এখানে সাক্ষাৎকরেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। মিঃ অডিবার্টেরসঙ্গে সাক্ষাৎকারকালে শ্রী মোদী ২০১৫ সালে তাঁর ফ্রান্স সফর এবং ২০১৬-তে ভারতেরসাধারণতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ফরাসী প্রেসিডেন্ট মিঃওল্যাদ-এর এদেশ সফরের কথা স্মরণ করে বলেন যে, এই বিনিময় কর্মসূচি দ্বিপাক্ষিকসম্পর্ককে ভবিষ্যতের লক্ষ্যে আরও নিবিড় করে তুলতে সাহায্য করেছে। শ্রী মোদী বলেনযে, ভারত ও ফ্রান্সের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক প্রতিরক্ষা, মহাকাশ এবং অসামরিকক্ষেত্রে পরমাণু সহযোগিতাঁর গন্ডী অতিক্রম করে সন্ত্রাস দমন, নৌ-নিরাপত্তা এবংপুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি সহ আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রসার লাভ করেছে। “ আমার প্রিয় সুহৃদ শিনজো আবে বিপুল ভোটে জয়ী হওয়ায়তাঁকে আন্তরিক অভিনন্দন। উপ-প্রকল্প| এই উপ-প্রকল্পের অধীনে আগামী তিন বছরে৪২৫ কোটি টাকা ব্যয়ের মাধ্যমে ১০০০ টি চামড়া, জুতো ও আনুষঙ্গিক সরঞ্জামেরকেন্দ্রকে সহায়তা করার প্রস্তাব করা হয়েছে| এই বিশেষ প্রকল্পে শ্রম আইনকে সরলীকরণ করা ও কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্যসহায়তারও পদক্ষেপ রয়েছে: ১) আয়কর আইনের 80JJAA ধারায় সুযোগ বৃদ্ধি: এই ধারায় বর্তমানে কোনো ভারতীয়কোম্পানির একজন নতুন শ্রমিককে বছরে ন্যূনতম ২৪০ দিন কাজের সুযোগ দিয়ে তিন বছরেঅতিরিক্ত মজুরি প্রদানের লক্ষ্যে যে ছাড়ের সুযোগ রয়েছে, তা চামড়া, জুতো ওএসেসরিজের ক্ষেত্রের মরসুমি চরিত্রের বিষয়টি বিবেচনা করে আরও ১৫০ দিন আরও শিথিলকরা হবে| বর্তমানে চিন, কোরিয়া এবং জার্মানির মতো রাষ্ট্রগুলি ভারত মহাসাগর অঞ্চলে সক্রিয়ভাবে কাজ করে চলেছে। “উত্তরপ্রদেশেরবেরিলিতে বাস দুর্ঘটনা বিশেষভাবে মর্মস্পর্শী। প্রাণহানির ঘটনায় জানাই আমার শোক ও সমবেদনা । আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এই প্রার্থনা জানাই।” ফিদেলকাস্ত্রোর জীবনাবসানে শোক প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর আত্মাচিরশান্তি লাভ করুক। এই শোকেরমুহূর্তে আমরা রয়েছি কিউবার সরকার ও জনগণের সঙ্গেই। ফিদেল কাস্ত্রোছিলেন, বিংশ শতাব্দীর এক বিশেষ প্রবাদপ্রতিম ব্যক্তিত্ব। অসময়ের ঝড়বৃষ্টিতে গুজরাটের বিভিন্ন প্রান্তে জীবনহানির ঘটনা ঘটায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “গুজরাটের বিভিন্ন এলাকায় অসময়ের ঝড়বৃষ্টিতে জীবনহানির ঘটনায় আমি চিন্তিত। শোক সন্তপ্ত পরিবারগুলির জন্য আমি ব্যথিত! প্রশাসন পরিস্থিতির ওপর কড়া নজর রাখছে। ক্ষতিগ্রস্তদের সব রকম সহায়তা দেওয়া হবে”। সিঙ্গাপুরের উপ-প্রধানমন্ত্রী থারমন সান্মুগারত্নম, আর্থিক জগতের প্রভাবশালী ব্যক্তিরা, সিঙ্গাপুরের অর্থনৈতিক সংস্থার ম্যানেজিং ডাইরেক্টর রবি মেনন, বিশ্বের ১০০টি দেশের হাজার হাজার প্রতিনিধিরা। সিঙ্গাপুর ফিনটেক উৎসবে প্রথম সরকারি প্রধান হিসাবে মূল বক্তব্য রাখা আমার জন্য অত্যন্ত গর্বের বিষয়। এটি উজ্জ্বল ভবিষ্যতের দিকে তাকিয়ে থাকা ভারতের তরুণ প্রজন্মের প্রতি উৎসর্গ করলাম। ভারতে যে অর্থনৈতিক বিপ্লব হচ্ছে এবং ১৩০ কোটি মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন হচ্ছে – এটি তার পরিচায়ক। এটি আর্থিক ও প্রযুক্তিগত একটি অনুষ্ঠান এবং একটি উৎসবও বটে। ভারতে এখন আলোর উৎসব দীপাবলীর সময়। সারা বিশ্বে এই উৎসব আশা, জ্ঞান ও উন্নয়নের প্রতীক হিসাবে পালিত হয়। সিঙ্গাপুরে দীপাবলীর আলো এখনও প্রজ্জ্বলিত। ফিনটেক উৎসব বিশ্বাসের অনুষ্ঠান। এবং আশ্চর্যের হলেও এটাই সত্যি যে মাত্র তিন বছরেই এই উৎসব বিশ্বের সর্ববৃহৎ অনুষ্ঠানে পরিণত হয়েছে। অর্থনৈতিক দিক থেকে সিঙ্গাপুর আন্তর্জাতিক হাব এবং ডিজিটাল ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে দেশটি এখন এগিয়ে চলেছে। স্টার্ট আপ বৃত্ত নিয়ে যে পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে, আমি তা শুনেছি। Ø আপনার মূলধন ১০ শতাংশ বাড়াতে বিনিয়োগকারীকে বলুন যে, আপনার নিয়মিত কোনও ব্যবসা নেই, আপনি একটি মঞ্চ চালান। Ø আপনি যদি আপনার মূলধন ২০ শতাংশ বাড়াতে চান, তবে বিনিয়োগকারীকে বলুন – আপনি ফিনটেক স্পেসে কাজ করছেন। Ø কিন্তুআপনিযদিসত্যিচানযে, আপনারবিনিয়োগকারীরপকেটপুরোখালিহয়েযাক, তাহলেতাঁদেরবলুনযে, আপনিব্লকচেনব্যবহারকরছেন। বিশ্ব অর্থনীতির পরিবর্তনে প্রযুক্তি ব্যবস্থাপনার যে আকর্ষণীয় সুযোগ রয়েছে, এটি আপনাকে সে বিষয়ে জানাবে। নতুন প্রযুক্তি ও যোগাযোগ ব্যবস্থার মাধ্যমে অর্থনীতির যে পরিবর্তন আসছে, ইতিহাস আমাদের তা দেখিয়েছে। প্রযুক্তির দিক থেকে পরিবর্তনের এক ঐতিহাসিক ক্ষণে দাঁড়িয়ে রয়েছি আমরা। ডেক্সটপ থেকে ক্লাউড, ইন্টারনেট থেকে সোশ্যাল মিডিয়া, আইটি পরিষেবা থেকে ইন্টারনেট ব্যবস্থাপনা, আমরা খুব স্বল্প সময়ের মধ্যে একটি দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়েছি। প্রতিদিনের ব্যবসায় এটি ব্যাঘাত সৃষ্টি করছে। আন্তর্জাতিক অর্থনীতির ধরণ বদলে যাচ্ছে। নতুন বিশ্বে ক্ষমতা ও প্রতিযোগিতার সংজ্ঞা নির্ধারণ করছে প্রযুক্তি। জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে এটি সীমাহীন সুযোগ তৈরি করছে। আমি শুনেছি, ফেসবুক, ট্যুইটার বা মোবাইল ফোন যত দ্রুতগতিতে ছড়িয়ে পড়েছে – ঠিক ততটা দ্রুততার সঙ্গে ২০১৪ সালে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উন্নয়ন ও ক্ষমতায়ন হয়েছে। সারা বিশ্বের দৃষ্টিভঙ্গী ও স্বপ্ন দ্রুত বাস্তবে রূপান্তরিত হচ্ছে। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার শক্ত ভিত প্রয়োজন ছিল – যা ভারতের মতো বিশালায়তন দেশের জন্য সহজ কাজ ছিল না। আমরা বছর নয়, কয়েক মাসের মধ্যে এই লক্ষ্য পূরণ করতে চেয়েছি। ফিনটেকের ক্ষমতা এবং ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থাপনায় আমরা আশাতীত গতিতে পরিবর্তনের কাজ শুরু করেছি। ১৩০ কোটি ভারতবাসীর জন্য অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থা বাস্তবে পরিণত হতে শুরু হয়েছে। আমরা মাত্র কয়েক বছরে ১২০ কোটি জনগণের বায়োমেট্রিক পরিচয় তৈরি করেছি, যা আধার নামে পরিচিত। জন ধন যোজনার মাধ্যমে আমরা প্রত্যেক ভারতবাসীকে ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খুলে দেওয়ার লক্ষ্য নিয়েছি। এখন ১ কোটিরও বেশি বায়োমেট্রিক পরিচয়পত্র, ১ কোটিরও বেশি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট এবং ১ কোটিরও বেশি মোবাইল ফোন ভারতে দেওয়া হয়েছে, যা বিশ্বে সরকারি পরিকাঠামোয় সর্ববৃহৎ ব্যবস্থা। ৩ লক্ষ ৬০ হাজার কোটি টাকার বেশি মূল্যের সরকারি সুবিধা সরাসরি জনগণের কাছে পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। এখন আর দেশের দূরবর্তী কোনও গ্রামের দরিদ্র নাগরিককে তাঁর অধিকার অর্জনের জন্য লম্বা পথ পাড়ি দিতে হয় না, বা মধ্যস্থতাকারীকে টাকা দিতে হয় না। এখন আর কোনও ভুয়ো অ্যাকাউন্ট সরকারি অর্থ লুঠ করতে পারে না। আমরা প্রায় ৮০ হাজার কোটি টাকা নষ্ট হওয়া বন্ধ করতে পেরেছি। এতদিন পর্যন্ত যে লক্ষাধিক মানুষ, তাঁদের অ্যাকাউন্টে বিমার টাকা পাওয়া নিয়ে অনিশ্চয়তায় ভুগতেন, বর্তমানে তাঁরা বৃদ্ধ বয়সে পেনশনের নিরাপত্তা পাচ্ছেন। কোনও পড়ুয়া সরাসরি তাঁর অ্যাকাউন্টে বৃত্তির টাকা পান। এখন আর তাঁকে এই জন্য নানারকম কাগজপত্র পূরণ করতে হয় না। বর্তমানে, ডিজিটাল পরিকাঠামো বিশ্বের সর্ববৃহৎ স্বাস্থ্য পরিষেবা প্রকল্প আয়ুষ্মান চালু করতে সাহায্য করেছে। এরফলে, ৫ কোটি ভারতীয়কে নামমাত্র ব্যয়ে স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা দেওয়া হবে। মুদ্রা যোজনার আওতায় ১ কোটি ৪৫ লক্ষ ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যোগীকে ঋণ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। গত চার বছরে এই ঋণের অর্থ পরিমাণ ৬ লক্ষ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এর প্রায় ৭৫ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়েছে মহিলাদের। মাত্র কয়েক সপ্তাহ আগে আমরা ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক চালু করেছি। সারা ভারতের ১ কোটি ৫০ হাজার পোস্ট অফিস এবং ৩ লক্ষেরও বেশি ডাকবিভাগের কর্মীরা বাড়ি থেকে বাড়ি ব্যাঙ্কিং পরিষেবা দেওয়ার জন্য প্রযুক্তির ব্যবহার করছে। অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থার জন্য অবশ্যই ডিজিটাল যোগাযোগ ব্যবস্থাপনার প্রয়োজন। ভারতের ১ লক্ষ ২০ হাজারের বেশি গ্রাম পঞ্চায়েতকে ইতিমধ্যেই ৩ লক্ষ কিলোমিটার ফাইবার অপ্টিক কেবলের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হয়েছে। ৩ লক্ষেরও বেশি সাধারণ পরিষেবা কেন্দ্র গ্রামে গ্রামে ডিজিটাল মাধ্যমে সুবিধা পৌঁছে দিচ্ছে। এর ফলে, কৃষকরা সহজে তাঁদের জমি সংক্রান্ত নথি, ঋণ, বিমা, বাজারজাতকরণ এবং পণ্যের সর্বোৎকৃষ্ট মূল্য সহ সবরকম সুবিধা পাচ্ছেন। এগুলির মাধ্যমে মহিলাদের স্বাস্থ্য পরিষেবা দেওয়া হচ্ছে। মোবাইল ও ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের জন্য পেমেন্টের সুবিধা দিতে বিশ্বের সবচেয়ে সহজ ভীম ইউপিআই ব্যবস্থাপনা আনা হয়েছে। যাঁদের মোবাইল আছে কিন্তু ইন্টারনেট পরিষেবা নেই, তাঁদের জন্য আনা হয়েছে ১২টি ভাষায় ইউএসএসডি ব্যবস্থাপনা। এবং যাঁদের মোবাইল নেই, ইন্টারনেট পরিষেবাও নেই, তাঁদের জন্য বায়োমেট্রিক ব্যবহার করে আধার-নির্ভর পেমেন্ট ব্যবস্থা করা হয়েছে। এতে ১ কোটিরও বেশি লেনদেন ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে, যা গত দু’বছরে প্রায় ছ’গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। একজন দোকানদার এখন তাঁর রোজগারের টাকা আদায় ও খরচ কমানোর কাজে অনলাইন ব্যবস্থার সুবিধা নেন। একজন ফল চাষী, কৃষক বা গ্রামীণ মজদুর সহজেই তাঁদের সামগ্রী সরাসরি বাজারে পৌঁছতে পারেন। এর ফলে, তাঁদের আয় বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং পেমেন্টও দ্রুতগতিতে হচ্ছে। প্রতিটি ডিজিটাল পেমেন্ট ব্যবস্থাপনা সময় বাঁচায়। এর ফলে, দেশের বিপুল সাশ্রয় হয়। এটি প্রত্যেক ব্যক্তি ও দেশের অর্থনীতি উৎপাদনশীলতা বাড়াচ্ছে। এটি কর সংগ্রহের পরিমাণ বাড়িয়েছে এবং অর্থনীতিতে স্বচ্ছতা এনেছে। সর্বোপরি, ডিজিটাল পেমেন্ট সম্ভাবনাময় বিশ্বের সূচনা। অর্থনৈতিক স্থিতাবস্থার অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রেও পৌঁছে যাচ্ছে। এগুলি সবই সম্ভব হচ্ছে মাত্র এক বছর আগে চালু হওয়া দেশব্যাপী অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর বা জিএসটি ডিজিটাল নেটওয়ার্কের মাধ্যমে। ব্যাঙ্ক এখন ঋণ নিয়ে সরাসরি তাঁদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। মাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই ১ লক্ষ ৫০ হাজার এ ধরণের শিল্পোদ্যোগী ঋণের জন্য আবেদন জানিয়েছেন। কর্মসংস্থান ও উন্নয়ন পরিচালনায় এটি ফিনটেকের ক্ষমতা। ডিজিটাল প্রযুক্তি দুর্নীতি দূর করতে ও স্বচ্ছতা আনতে সহায়ক হয়েছে। এই লক্ষ্যে সরকারি সংস্থার মাধ্যমে সামগ্রী ক্রয় করার জন্য একটি ঐক্যবদ্ধ প্ল্যাটফর্ম হ’ল ‘জেম’। সারা বিশ্বের কাছে স্টার্ট আপ দেশ হিসাবে ও নেতৃত্বদানকারী ফিনটেক হিসাবে ভারতের পরিচয় তৈরি হয়েছে। ফিনটেক ক্ষেত্রে ভারতের ভবিষ্যৎ ক্রমশ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। তাঁরা আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স ও ব্লক চেন ব্যবহার করে নানারকম সমাধান তৈরি করছে। তরুণ প্রজন্ম স্বাস্থ্য থেকে শিক্ষা, ক্ষুদ্র ঋণ থেকে শুরু করে বিমা – সব ক্ষেত্রেই দেশের সামাজিক লক্ষ্য পূরণের জন্য কাজ করে চলেছে। ডিজিটাল ইন্ডিয়া ও স্টার্ট আপ ইন্ডিয়ার মতো কর্মসূচি থেকে এই উদ্যোগগুলি নেওয়া হচ্ছে। এটি ভারতকে বিশ্বের দরবারে সবচেয়ে কম খরচে তথ্য সংগ্রহের সর্ববৃহৎ দেশ হিসাবে পরিচয় দিচ্ছে। তাই আমি সব ফিনটেক কোম্পানি ও স্টার্ট আপ কোম্পানিগুলিকে বলব যে, ভারতই হচ্ছে আপনার বিনিয়োগের সর্বোৎকৃষ্ট দেশ। এলইডি বাল্ব শিল্পের মধ্য দিয়ে ভারত শক্তি সঞ্চয়ের পাশাপাশি, স্বল্প মূল্যে সকলের জন্য বিদ্যুতের ব্যবস্থা করে দিতে সক্ষম হয়েছে। সংক্ষেপে ভারতের ফিনটেকের ছ’টি প্রধান সুবিধা রয়েছে, সেগুলি হ’ল – প্রবেশ, দায়িত্ব, যোগাযোগ, জীবনযাত্রার মান সহজ করা, সুযোগ এবং অন্তর্ভুক্তি। সারা বিশ্বে ভারত – প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে আফ্রিকা থেকে ল্যাটিন আমেরিকা সর্বত্রই আমরা সাধারণ জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনে উদ্ভাবনের বিশেষ উৎসাহমূলক কাহিনী দেখতে পাই। কিন্তু এক্ষেত্রে আরও অনেক কিছু করার আছে। আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ, সকলের জন্য উন্নয়ন। ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট নেই এমন ১ কোটি ৭০ লক্ষেরও বেশি বিশ্ববাসীকে আনুষ্ঠানিক অর্থনৈতিক ব্যবস্থাপনার অন্তর্ভুক্ত করা আমাদের লক্ষ্য হওয়া উচিৎ। অর্থের সুবিধার অভাবে কোনও শিল্পের সৃষ্টি যেন বন্ধ না হয় এবং কোনও স্বপ্নই যেন অধরা না থাকে, তা সুনিশ্চিত করতে আমাদের ফিনটেক ব্যবহার করতে হবে। ব্যাঙ্ক ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে আমাদের আরও ঝুঁকি মুক্ত ও সহজ করে তুলতে হবে। দুর্নীতির মোকাবিলায় এরা যেন আরও কার্যকর ভূমিকা নিতে পারে – সে বিষয়ে নজর দিতে হবে। অর্থ তছরূপ এবং অন্যান্য অর্থনৈতিক দুর্নীতি মোকাবিলায় আমাদের অবশ্যই ফিনটেক টুল ব্যবহার করতে হবে। আমাদের তথ্য ও সামগ্রিক ব্যবস্থাপনা যখন বিশ্বাসযোগ্য ও নিরাপদ হবে, তখন বিশ্ব অর্থনীতির আরও উন্নতি হবে। সাইবার হুমকির মোকাবিলায় আমাদের আন্তর্জাতিক ব্যবস্থাপনাকে আরও সুরক্ষিত করতে হবে। সাধারণ জনগণের জন্য চালু করা প্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে তাঁদের মধ্যে সচেতনতা বাড়াতে হবে। এর জন্য ফিনটেকের প্রয়োজন প্রচার কর্মসূচির। সবশেষে, ভবিষ্যতের জন্য দক্ষতা উন্নয়নে আমাদের বিনিয়োগ করতে হবে। দীর্ঘ মেয়াদী লগ্নির জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। সুযোগ ও সম্ভাবনা বৃদ্ধিতে এবং কোটি কোটি মানুষের জন্য চিরতরে উন্নয়নকে বাস্তব রূপ দিতে হবে। বিশ্বকে আরও মানবিক ও বৈষম্যহীন করে তুলতে এবং আশা ও লক্ষ্য অর্জনের মধ্যে ফারাক দূর করতে উদ্যোগ নিতে হবে। ভারত অন্যদের থেকে যেমন শিখবে, তেমনই সারা বিশ্বের সঙ্গে আমরা আমাদের অভিজ্ঞতাকে ভাগ করে নেব। কারণ, ভারতকে যা চালিত করে, তা অন্যদের জন্য আশার সঞ্চার করে। আমরা ভারতের জন্য যা স্বপ্ন দেখি, গোটা বিশ্ব তা অর্জন করবে সেই আশা করি। এটি সর্বসাধারণের যাত্রা। অভিষেক জানিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর স্বচ্ছ ভারতের ডাকে উদ্বুদ্ধ হয়ে মানুষকে এ বিষয়ে সচেতন করার জন্য তার অভিযান শুরু করেছেন। এ কাজে তিনি একটি গোটা বছর ব্যয় করবেন বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী অভিষেকের অভিনব জনসচেতনতা প্রয়াসের প্রশংসা করেন এবং আগামী প্রয়াসের সাফল্যও কামনা করেন। প্রসঙ্গত, ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক দৃঢ় করার ক্ষেত্রে পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিতে আদান-প্রদান আরও জোরদার করা আবশ্যক। এ বছর ১১ জানুয়ারি নয়াদিল্লিতে স্বাক্ষরিত ইন্ডিয়ান কম্প্যুটার এমার্জেন্সিরেসপন্স টিম (সিইআরটি-ইন) এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের হোম ল্যান্ড সিকিউরিটিডিপার্টমেন্টের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত সহযোগিতা চুক্তির বিষয়টি বুধবারআলোচিত হ’ল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এদিনের বৈঠকে ঐ চুক্তির খুঁটিনাটিসম্পর্কে বিশদভাবে অবহিত করা হয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে। আইআইটি ভিলাইয়ের শিলান্যাসও করেন তিনি। এছাড়া, ভারতনেট-এর দ্বিতীয় পর্যায়ের সূচনা উপলক্ষে একটি ফলকের আবরণও তিনি উন্মোচন করেন। জগদলপুর এবং রায়পুরের মধ্যে বিমান পরিষেবা আজ আনুষ্ঠানিকভাবে চালু করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির আওতায় সুফল গ্রহীতাদের হাতে তিনি তুলে দেন ল্যাপটপ, চেক ও শংসাপত্র। জনসমাবেশে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, যে কোন ধরণের হিংসারই উচিৎ জবাব হল উন্নয়ন। জাতি গঠনের কাজে ভিলাই ইস্পাত প্রকল্পের অবদান যে অনেকখানি, সেকথাও তিনি ব্যাখ্যা করেন জনসাধারণের কাছে। সম্প্রসারিত এবং অত্যাধুনিক এই প্রকল্পটিকে নতুন ভারত গঠনের একটি শক্তিশালী ভিত বলে বর্ণনা করেন তিনি। যে উন্নয়ন প্রকল্পগুলির আজ সূচনা হল সেগুলিও আখেরে সাধারণের উপকারে আসবে বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, ‘গ্রাম স্বরাজ অভিযান’-এর ফল গত দু’মাসে বেশ ইতিবাচক হয়েছে বলে মনে করেন তিনি। জন ধন যোজনা, মুদ্রা যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা, ফসল বিমা যোজনা এবং সৌভাগ্য-এর মতো বিভিন্ন কর্মসূচি এই রাজ্যে বিশেষ সুফল এনে দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আদিবাসী জনজাতির কথা চিন্তা করে এবং তাঁদের স্বার্থ রক্ষায় কঠোরভাবে রূপায়িত হচ্ছে অরণ্য অধিকার আইন। এবার বেশ গরম পড়েছিল। কিন্তুসৌভাগ্যের বিষয় যে বর্ষা ঋতু সময় মত নিজের পদচিহ্ন অনুসরণ করে এগিয়ে আসছে। দেশেরবেশ কিছু অংশে বর্ষা শুরু হয়ে গেছে। বর্ষার পর ঠাণ্ডা হাওয়ায় বিগত দিনের গরম থেকেকিছুটা আরাম অনুভূত হচ্ছে। আমরা সবাই দেখেছি যে ব্যক্তিগত জীবনে বা সার্বজনিকজীবনে যতই উত্তেজনা বা উদ্বেগ থাকুক, বর্ষার আগমন কিন্তু আমাদের মানসিক স্থিতিবদলে দেয়। আজ দেশেরবিভিন্ন অংশে ভগবান জগন্নাথ দেবের রথযাত্রা খুব উৎসাহ ও আনন্দের সঙ্গে পালিতহচ্ছে। আজকাল তো পৃথিবীর অন্যান্য কিছু জায়গাতেও ভগবান জগন্নাথদেবের রথযাত্রা উৎসবপালিত হয়। আভিধানিক অর্থে পাওয়া যায় যে জগন্নাথদেবেররথ থেকেই এই শব্দ এসেছে। এর থেকেই বোঝা যায় যে বিশ্বের মানুষ নিজের নিজের মতেকীভাবে জগন্নাথদেবের এই যাত্রার গুরুত্বকে স্বীকার করেছেন। ভগবান জগন্নাথদেবেরযাত্রা উপলক্ষে আমি সব দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানাচ্ছি আর জগন্নাথদেবের শ্রীচরণেপ্রণাম করছি। ভারতের বিবিধতাই ভারতের বিশেষত্ব। ভারতের বিবিধতাই ভারতের শক্তি।রমজানের পবিত্র মাস শ্রদ্ধা-ভক্তির সঙ্গে পালিত হয়েছে। এবার ঈদের উৎসব। ঈদ-উল-ফিতর উপলক্ষে আমার পক্ষথেকে সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা। আসুন, আমরা সবাই মিলে এইপবিত্র উৎসব থেকে অনুপ্রেরণা নিয়ে খুশির ভাণ্ডারকে বিলিয়ে দিয়ে দেশকে এগিয়ে নিয়েযাই। রমজানের এইপবিত্র মাসে উত্তরপ্রদেশের বিজনৌর-এর মুবারকপুর গ্রামের একটি খুব অনুপ্রেরণামূলকঘটনার কথা জানতে পারলাম। এই রমজান মাসেগ্রামের সবাই মিলে শৌচালয় বানানোর সিদ্ধান্ত করেন। ব্যক্তিগত শৌচালয় বানানোর জন্যসরকার থেকে যে সহায়তা দেওয়া হয় সেই সহায়তাস্বরূপ ১৭ লক্ষ টাকা তাঁদের দেওয়া হয়েছে।আপনারা শুনে খুশি হবেন এবং একই সঙ্গে আশ্চর্য হবেন যে রমজানের এই পবিত্র মাসেওখানকার মুসলমান ভাই-বোনেরা সরকারের ওই ১৭ লক্ষ টাকা ফিরিয়ে দিয়েছেন। সামাজিক উন্নয়নের সুযোগে এই পরিবর্তনআনার জন্য আমি রমজান মাসের এই পবিত্র সময়ে মুবারকপুরের সব গ্রামবাসীকে ধন্যবাদজানাচ্ছি। তাঁদের প্রতিটি বিষয় খুবই অনুপ্রেরণামূলক। সব থেকে বড় কথা যে তাঁরামুবারকপুরকে ‘উন্মুক্ত জায়গায় শৌচকার্য’-মুক্ত অঞ্চল করেছেন। আমরা জানি যেআমাদের দেশের তিনটি রাজ্য – সিকিম, হিমাচল প্রদেশ এবং কেরল ইতিমধ্যে ‘উন্মুক্তস্থানে শৌচকার্য’-মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এই সপ্তাহে উত্তরাখণ্ড এবং হরিয়ানাকেও ‘উন্মুক্তস্থানে শৌচকার্য’-মুক্ত ঘোষণা করা হয়েছে। এই কাজ সম্পন্ন করার জন্য এই পাঁচরাজ্যের প্রশাসন এবং জনতাকে বিশেষভাবে আমার কৃতজ্ঞতা জানাচ্ছি। আমরা খুব ভালোভাবেই জানি যে ব্যক্তিগত জীবনে বা সামাজিক জীবনে কোনও ভালো কাজ করার জন্য অনেকপরিশ্রম করতে হয়। আমার হাতের লেখা যদি খারাপ হয় তাহলে সেটাকে ঠিক করার জন্য অনেকদিন যাবৎ সচেতন ভাবে প্রয়াস করতে হয়। এই ভাবে শারীরিক এবং মানসিক অবস্থার পরিবর্তনআসে। এরথেকে মুক্তির জন্য আমাদের অবিরাম প্রচেষ্টা করতে হবে। প্রত্যেকের মনযোগ আকর্ষণ করতে হবে। প্রেরণাদায়ক ঘটনাগুলিকেও বার বার স্মরণ করতেহবে। আমি খুশি যে পরিচ্ছন্নতা এখন আর কেবলমাত্র সরকারী কার্যক্রম নয়। এটি সমাজে সাধারণজনগণের আন্দোলনের রূপ নিচ্ছে। প্রশাসনের সঙ্গে যুক্ত মানুষরা যখন জনসাধারণের অংশগ্রহণের সঙ্গে এই কাজকে এগিয়ে নিয়ে যান তখন স্বাভাবিক ভাবেই শক্তি অনেক বেড়ে যায়। বিগত দিনেরএকটি ভালো ঘটনা আমার মনে পড়ছে যেটা আমি আপনাদের বলতে চাই। এই ঘটনাটিঅন্ধ্রপ্রদেশের বিজয়নগরম জেলার। জনসাধারণের সহায়তায় সেখানকার প্রশাসন একটি বড় কাজহাতে নিয়েছেন। আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনারা শুনে খুশি হবেন যেজনতা এবং স্থানীয় প্রশাসন একত্রে ১০০ ঘণ্টায় দশ হাজার শৌচালয় বানানোর কাজ সাফল্যেরসঙ্গে সম্পন্ন করেছে। গণতন্ত্রের প্রতি সজাগ থাকা জরুরীআর এই কারণেই গণতন্ত্রকে আঘাত করে এমন ঘটনাকে স্মরণ করা এবং গণতন্ত্রের পক্ষে শুভঘটনাগুলিকে উৎসাহিত করা প্রয়োজন। সমগ্র দেশকেই একপ্রকার জেলখানাতেপরিণত করা হয়েছিল। বিরোধীদের আওয়াজকে স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। জয়প্রকাশ নারায়ণ-সহ দেশের গণ্যমান্য নেতাদের কয়েদ করা হয়েছিল। বিচার ব্যবস্থাও ওইভয়াবহ জরুরী অবস্থা থেকে রেহাই পায়নি। সংবাদপত্রকে পুরোপুরি অপ্রয়োজনীয় করে দেওয়াহয়েছিল। এই ঐতিহ্যকে আরওশক্তিশালী করতে হবে আমাদের। আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, প্রত্যেকভারতবাসী আজ বিশ্বে মাথা উঁচু করে নিজেকে গর্বিত অনুভব করছে। ২১শে জুন, ২০১৭ গোটাবিশ্ব যোগময় হয়ে গেল। সমুদ্র থেকে পর্বত পর্যন্ত মানুষজন সকাল-সকাল যোগের মাধ্যমেসূর্যের কিরণকে স্বাগত জানাল। কোনও ভারতবাসী আছেন যার গর্ব হবে না এতে? এমন নয় যেযোগাভ্যাস হত না আগে, কিন্তু আজ যখন যোগের সূত্রে বাঁধা পড়েছে, তখন যোগই বিশ্বকেজোড়ার কারণ হয়ে উঠেছে। দুনিয়ার প্রায় সব দেশ এই যোগাভ্যাসের উপলক্ষকে নিজেদেরউপলক্ষ করে নিয়েছে। একদিকে যেখানে চীনে ‘দ্য গ্রেট ওয়াল অফ চায়না’র উপরে মানুষযোগাভ্যাস করেছে সেখানে অন্যদিকে সমুদ্রতল থেকে দু হাজার চারশো মিটার উপরে পেরুর ‘ওয়ার্ল্ডহেরিটেজ সাইট’ মাচ্চুপিছুতে যোগাভ্যাস করেছে মানুষ। ফ্রান্সে আইফেল টাওয়ারের ছায়ায়যোগ করেছে মানুষ। সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর আবু ধাবিতে চার হাজারের বেশি মানুষ সম্মিলিতযোগাভ্যাস করেছে। আফগানিস্তানের হেরাত-এ ইণ্ডিয়া-আফগান ফ্রেণ্ডশিপ ড্যাম সলমাবাঁধের উপর যোগ করে ভারতকে বন্ধুত্বের এক নতুন দিগন্ত উপহার দিয়েছে তারা । সিঙ্গাপুরের মত ছোটদেশে সত্তরটা জায়গায় অনুষ্ঠান হয়েছে আর গোটা সপ্তাহ জুড়ে ওঁরা এক অভিযানচালিয়েছেন। রাষ্ট্রসঙ্ঘ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উপলক্ষে দশটা ডাকটিকিট প্রকাশ করেছে।ওই দশটা ডাকটিকিট তারা প্রকাশ করেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সদর দপ্তরে যোগ বিশেষজ্ঞেরউপস্থিতিতে যোগসত্র পরিচালিত হয়েছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের কর্মচারীরা, সারা দুনিয়ারডিপ্লোম্যাটরা – প্রত্যেকে এতে অংশ নেয়। এবার ফের একবার, যোগ বিশ্ব রেকর্ড সৃষ্টিরকাজও করেছে। গুজরাতের আমেদাবাদে প্রায় পঞ্চান্ন হাজার মানুষ একসঙ্গে যোগ করে একনতুন বিশ্বরেকর্ড তৈরি করেছেন। আমারও লক্ষ্ণৌয়ে যোগের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের সুযোগহল। কিন্তু প্রথমবার বৃষ্টিতে যোগ করার সৌভাগ্য হল আমার। আমাদের সৈনিকরা যেখানেমাইনাস কুড়ি, পঁচিশ, চল্লিশ ডিগ্রী তাপমাত্রায় থাকে সেই সিয়াচিনেও যোগাভ্যাস করাহয়েছে। আমাদের সশস্ত্র সেনাদল হোক, বি-এস-এফ হোক, আই-টি-বি-পি হোক, সি-আর-পি-এফহোক, সি-আই-এস-এফ হোক, প্রত্যেকে নিজেদের কর্তব্যের পাশাপাশি যোগে অংশ নিয়েছে। এইযোগ দিবসে আমি বলেছিলাম যে তিন প্রজন্ম, যেহেতু এটা তৃতীয় ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ছিল, তাই আমি বলেছিলাম যে পরিবারের তিন প্রজন্ম এক সঙ্গে যোগ করে তার ফোটো শেয়ারকরুন। কিছু টিভি চ্যানেল এই ব্যাপারটাকে আরও এগিয়ে নিয়ে গিয়েছে। এই ব্যাপারে অনেকফোটো পেয়েছি আমি, সেগুলোর মধ্যে থেকে কিছু নির্বাচিত ফোটো সঙ্কলন করে নরেন্দ্রমোদী অ্যাপে রাখা আছে। আমরা কি কিছু করতে পারি এ ব্যাপারে? আমরা কি এ ব্যাপারে এমনকিছু করতে পারি না স্যার যাতে দেশ জুড়ে এর প্রয়োগ হয়?” কিছু দিন আগে আমার খুব প্রিয় একঅনুষ্ঠানে যাওয়ার সুযোগ হয়েছিল। কেরলে কিছু দিন ধরে ভালো অনুষ্ঠান হচ্ছে, পি এনপানিক্কর ফাউণ্ডেশনের উদ্যোগে মানুষের মধ্যে পড়ার অভ্যাস তৈরি হয়েছে, বই পড়ারপ্রতি উৎসাহী হচ্ছে মানুষ, এই জন্য ‘রিডিং ডে’, ‘রিডিং মান্থ’ পালন করা হচ্ছে।আমার সুযোগ হয়েছিল এর শুভারম্ভে যাওয়ার। সে রুমাল হবে খাদির যাতে খাদির শ্রীবৃদ্ধিঘটে। যতদিন পর্যন্ত আমি গুজরাতে ছিলাম তখন এটাই সবার অভ্যাস হয়ে গিয়েছিল, কিন্তুএখানে আসার পর আমার সেই অভ্যাস চলে যায়। কিন্তু কেরলে গিয়ে আবার সেই অভ্যাস জেগেউঠল। আর আমি তো আবার এখন সরকারে নোটিশ দেওয়া শুরু করেছি এ ব্যাপারে। আমরাও ধীরেধীরে এক স্বভাব তৈরি করতে পারি। এক বার হাত থেকে নিয়েইফেলে দিতে হয়। কিন্তু যদি বই দিই তবে সেটা বাড়ির অংশ হয়ে ওঠে, পরিবারের সদস্য হয়েওঠে। খাদির রুমাল দিয়ে স্বাগত জানালেও কত গরীব মানুষের সাহায্য হয়। যখন আমি এই সব কথা বলছি তখন ভাবুন এইসব ব্যাপারের কতঐতিহাসিক মূল্য রয়েছে। মায়ের হাতের স্পর্শ যেন ছিল সেখানে। কত বছর হয়ে গিয়েছে অথচ ক্যুইন এলিজাবেথ মহাত্মা গান্ধীর দেওয়া রুমাল যত্ন করেরেখেছেন। আর আমি যেতে উনি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে দেখালেন আমাকে। যখন আমি দেখছিলামতখন জানি না উনি চাইছিলেন কিনা যে আমি একবার ছুঁয়ে দেখি। মহাত্মা গান্ধীর একটাছোট্ট উপহার ওঁর জীবনের অংশ হয়ে গিয়েছে, ওঁর ইতিহাসের অঙ্গ হয়ে গিয়েছে। আমারবিশ্বাস যে এইসব অভ্যাস রাতারাতি বদলে যায় না আর কখনও কখনও এমন কথা বললে সমালোচনারশিকারও হতে হয়। কিন্তু এ সত্ত্বেও এমন কথা উচ্চারিত হওয়া উচিত, প্রয়াস চালিয়েযাওয়া উচিত। এখন আমি তো এটা বলতে পারি না যে আমি কোথাও গেলাম আর কেউ ফুলের তোড়ানিয়ে চলে এলেন, তখন আমি তাকে না বলে দেব, এটা আমি করতে পারব না। কিন্তু যাই হোক,সমালোচনাও হবে, কিন্তু কথা চালিয়ে যাওয়া উচিত, তাতে ধীরে ধীরে পরিবর্তন আসবে। আমার প্রিয় দেশবাসীগণ,প্রধানমন্ত্রী হওয়ার সূত্রে অনেক রকমের কাজ থেকে যায়। সেই মত আমি ‘মুদ্রা যোজনা’য় ব্যাঙ্ক থেকে কিছু ঋণনিয়ে বাজার থেকে কিছু মালপত্র কিনে যোগান দেওয়ার কাজ শুরু করলাম। এরমাঝে আমিশুনলাম সরকার ‘ Government E-Marketplace ’ নামে কিছু একটা ব্যবস্থা চালু করেছে। তো আমি খোঁজখবর নিয়েঐ ব্যবস্থায় নিজেকে রেজিস্টার করে নিলাম। যে কেউ সরকারকে যে কোনও সামগ্রী সরবরাহকরতে চায়, ইলেক্ট্রিক বাল্ব হতে পারে, ডাস্টবিন সরবরাহ করতে চাইতে পারেন, ঝাড়ু,চেয়ার হতে পারে, টেবিল হতে পারে – যা-ই বিক্রি করতে চান সেটা আপনি রেজিস্টার করতেপারেন। মনে রাখতে হবে, E-GEM -এ যাঁরাইরেজিস্টার করবেন তাঁদের প্রত্যেকের প্রস্তাব প্রত্যেক ডিপার্টমেণ্ট নিয়মিত দেখতেথাকবে। মাঝে দালাল না থাকায় অনেক সস্তায় পাওয়া যায়। উনি জানিয়েছেন, দুখানা Thermos কিনেছে এবং ১৬০০টাকা পেমেণ্টও পেয়ে গেছেন। হ্যাঁ এটাই হল Empowerment । এতে transparency আছে, empowerment হচ্ছে ,একই সঙ্গে Entrepreneurship -ও বাড়ছে। আমি চাইবো, যাঁরাই সরকারকেকিছু বিক্রি করতে চাইবেন তাঁদের সংখ্যা এভাবে যেন বাড়তেই থাকে। আমি বুঝতে পারছি Minimum Government and Maximum Governance -এর অতুলনীয় এক উদাহরণ এটা এবং এর লক্ষ্য MinimumPrice এবং Maximumease, efficiency and transparency । আমার প্রিয়দেশবাসী, একদিকে আমরা যেমন যোগ নিয়ে গর্ব করতে পারি, আবার Space Science -এও যে সাফল্য আসছেতা নিয়েও গর্ব করতে পারি। এই তোদু’দিন আগেই ইসরো কার্টোস্যাট-২ সিরিজ স্যাটেলাইটের সঙ্গে ৩০-টি ন্যানোস্যাটেলাইট-ও উৎক্ষেপণ করেছে। এইসব স্যাটেলাইটের মধ্যে ভারত ছাড়াও ফ্রান্স,জার্মানি, ইটালি, জাপান, ব্রিটেন, আমেরিকা এমন প্রায় ১৪-টা দেশ সামিল হয়েছে। আরভারতের এই ন্যানো স্যাটেলাইটগুলো থেকে কৃষিক্ষেত্রে, কৃষকদের উপকারে প্রাকৃতিকদুর্যোগের পূর্বাভাসের ক্ষেত্রেও প্রচুর উপকারী তথ্য পাওয়া যাবে। কিছুদিন আগে,আমাদের সবার নিশ্চয়ই মনে আছে ইসরো GSAT-19 -এর সফল উৎক্ষেপণ ঘটিয়েছে। এটা মনে রাখতে হবে এতদিন যতস্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ হয়েছে এবারেরটা তার মধ্যে সবথেকে বড় এবং Heavy Satellite । আমাদেরসংবাদপত্রগুলো এই স্যাটেলাইটকে ‘হাতির মত বড়’ বলেছে। ভেবে দেখুন তবে আমাদেরবৈজ্ঞানিকরা মহাকাশ গবেষণায় কত বড় প্রতিষ্ঠা অর্জন করেছে। ১৯-শে জুন Mars Mission -এর এক হাজার দিনপূর্ণ হল। আপনাদের সবার মনে আছে, এই মার্স মিশনের জন্য আমরা সাফল্যের সঙ্গে orbit -এ স্থাপন করতেপেরেছিলাম এবং তার মেয়াদ ছয় মাসের জন্য ধার্য করা হয়েছিল। এর কার্যকাল ছিল ৬মাসের। এই এক হাজার দিনপূর্ণ করা আমাদের বৈজ্ঞানিক যাত্রা আমাদের মহাকাশ গবেষণার ক্ষেত্রে মহত্তম সাফল্যনির্দেশ করছে। এখন দেখছি Sports -এর ক্ষেত্রেওআমাদের যুবসমাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছে। আমি এই অবসরেকিদাম্বী শ্রীকান্ত ও তাঁর কোচকে অভিনন্দন জানাচ্ছি। কিছুদিন আগে পি.টি.ঊষা-র ‘ঊষাস্কুল অফ অ্যাথলেটিক্স’-এ সিন্‌থেটিক টার্ফ-এর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে থাকার সুযোগপেয়েছিলাম। আমরা ক্রীড়াক্ষেত্রে যত সাফল্য অর্জন করব, স্পোর্টস, স্পোর্টস্‌ম্যানস্পিরিট বাড়তেই থাকবে। খেলাধুলা ব্যক্তিত্ব বিকাশের ক্ষেত্রে বিশেষ ভূমিকা পালনকরে। সার্বিক ব্যক্তিত্বের বিকাশে খেলাধুলা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে। দেশেপ্রতিভার কোনও অভাব নেই। যদি পরিবারের ছেলে-মেয়েদের খেলাধুলার দিকে ঝোঁক থাকে তাকেউৎসাহ দেওয়া উচিৎ। খেলার মাঠ থেকে টেনে এনে, ঘরে বন্দী করে পড়াশোনায় বাধ্য করলেকিছু লাভ নেই। পড়াশোনা করে বড় হতেই পারে, কিন্তু খেলাধুলায় আগ্রহ থাকলে, সামর্থ্যথাকলে স্কুল-কলেজ-পাড়া-প্রতিবেশীদের তাকে উৎসাহিত করা উচিত। আগামি অলিম্পিক-এরজন্য সবাইকে নতুন করে স্বপ্ন দেখা শুরু করতেই হবে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত৯৯টি জলসেচ প্রকল্পের কাজ চালু রাখার জন্য এই সম্পদ ব্যবহার করা হবে। এজন্য প্রাথমিক ২০ হাজার কোটিটাকার তহবিল গঠনের এক প্রস্তাব করা হয় যাতে অংশীদারিত্ব থাকবে কেন্দ্র এবংসংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির। ২০১৭-১৮ অর্থ বছরে দীর্ঘমেয়াদি সেচ তহবিলের আওতায় ২৯ হাজার কোটি টাকারপ্রয়োজন হবে বলে অনুমান করা হচ্ছে। বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় জল কমিশনেরপ্রতিবেদন অনুযায়ী ১৮টি প্রকল্পের কাজ ইতিমধ্যেই সম্পূর্ণ অথবা প্রায় সম্পূর্ণহয়েছে। মোট ৯৯টি প্রকল্প থেকে ২০১৬-১৭ বছরে ১৪ লক্ষ হেক্টর জমিতে সেচের সুযোগসম্প্রসারণের সম্ভাবনার কথাও উল্লেখ করা হয় ঐ প্রতিবেদনগুলিতে। “জন ধনযোজনার আজ তৃতীয় বর্ষপূর্তি। আমি অভিনন্দন জানাই দেশের কোটি কোটি সাধারণ মানুষকেবিশেষত, দরিদ্র জনসাধারণকে যাঁরা এই কর্মসূচির মাধ্যমে উপকৃত হয়েছেন। দরিদ্র,অবহেলিত এবং প্রান্তিক মানুষদের দেশের অর্থনৈতিক মূলস্রোতে সামিল করার লক্ষ্যে জনধন শুধুমাত্র এক বিপ্লবাত্মক কর্মসূচি মাত্র নয়, একইসঙ্গে তা এক ঐতিহাসিকআন্দোলনও। জন ধনযোজনা, সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি, মুদ্রা এবং স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া কর্মসূচিরমাধ্যমে কোটি কোটি মানুষের আশা-আকাঙ্ক্ষাকে আমরা বাস্তবায়িত করে তুলেছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার গুজরাটের আনন্দে আমূলের চকোলেট তৈরীর অত্যাধুনিক কারখানা সহ একাধিক আধুনিক মানের খাদ্য-প্রক্রিয়াকরণ ব্যবস্হার উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীর চকোলেট কারখানা পরিদর্শনের সময় সেখানকার নানা প্রযুক্তি ও সামগ্রী সম্পর্কে তাঁকে জানানো হয়। আনন্দের বাসিন্দারা বিপুল সংখ্যায় অনুষ্ঠানে উপস্হিত থাকায় প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ জানান। তিনি জানান, উন্নয়নমূলক নতুন এই প্রকল্পগুলি সমবায় ক্ষেত্রের জন্য খবুই উপযুক্ত। তিনি বলেন, আমূল ব্র্যান্ডটি সারা বিশ্বে সুপরিচিত এবং বিশ্বের সর্বত্র প্রেরণা যুগিয়েছে। আমূল কেবলমাত্র দুগ্ধজাত খাদ্য প্রক্রিয়াকরণেরই সংস্হা নয়, আমূল ক্ষমতায়ণের আর্দশ মডেল। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে সমবায়গুলির মাধ্যমে সর্দার প্যাটেল এমন একটি পথ দেখিয়েছেন যার সম্বন্ধে সরকার বা শিপ্লপতিরা ভাবেননি। তিনি বলেন, আমূল একটি বিশেষ মডেল, যাতে সাধারণ মানুষের গুরুত্ব রয়েছে। গুজরাটের সমবায় ক্ষেত্রে নানা উদ্যোগ জনসাধারণের বিশেষ করে কৃষকদের সহায়ক হয়েছে। সর্দার প্যাটেল নগরোন্নয়নের ওপর গুরুত্ব দিয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। আগামী ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকীর প্রসঙ্গ টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত দুগ্ধ প্রক্রিয়াকরণের ক্ষেত্রে ভালো কাজ করছে, তবে এক্ষেত্রে আরো উন্নতি সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী বলেন, উদ্ভাবন ও মূল্য সংযুক্তিকরণকে গুরুত্ব দেওয়ার সময় এসেছে। দেশ এবং জনগণের মধ্যে এর প্রভাবকে আপনি কিভাবে দেখেন? প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বুধবার ভারত ও সংযুক্তআরব আমীরশাহীর মধ্যে নৌ-পরিবহণ সংক্রান্ত প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতার বিষয়েস্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রটি অনুমোদিত হয়েছে। এই প্রস্তাবিতসমঝোতাপত্র নৌ-পরিবহণের সুবিধা ও উন্নয়ন, অন্তঃশুল্ক ও অন্যান্য প্রয়োজনীয়আনুষ্ঠানিকতা যেখানেই সম্ভব বিশেষ করে বন্দরগুলিতে সহজ-সরল করে তুলবে এবং বর্জ্যনিষ্কাশনের জন্য বর্তমান ব্যবস্থাগুলির ব্যবহারে সহায়তা করবে। নয়াদিল্লি, ১৬ মার্চ, ২০১৫ শ্রী নারায়ণভাই দেশাইয়ের প্রয়াণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। তাঁর প্রয়াণে আমি দুঃখিত। আমি তাঁর আত্মার শান্তি কামনা করি”। তিনি বলেন, এই লক্ষ্য পূরণে প্রত্যেক নাগরিকেরই উচিৎ একটিসুনির্দিষ্ট পথ অনুসরণ করা। মাননীয় প্রেসিডেন্ট ইউ টিন কিয়া এবং সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিবৃন্দ, মায়ানমার আমাদের এক বিশেষ বন্ধু রাষ্ট্র। ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে এক বিশেষ অবস্থান ও অস্তিত্ব রয়েছে এই রাষ্ট্রটির। এই দেশের মধ্য দিয়েই ভারতের সঙ্গে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার স্থলপথে যোগাযোগ স্থাপিত হয়েছে। আমাদের দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থার সুপ্রাচীন সাংস্কৃতিক তথা ঐতিহাসিক বন্ধন আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক মজবুত বনিয়াদ গড়ে তুলেছে। প্রেমও দয়া এবং সকল ধর্মের মধ্যে সমতার যে নীতির উল্লেখ রয়েছে বৌদ্ধ ধর্মে, তা আমাদের গতিপথকে সুনির্দিষ্ট করে তুলেছে। আপনাদের মহান দেশ তথা জাতি এক নতুন যুগে প্রবেশ করেছে। আপনার নেতৃত্বের প্রজ্ঞা ও অভিজ্ঞতা এবং গণতন্ত্রের প্রতি আপনার দেশবাসীর অঙ্গীকার এই যুগটিকে এক বিশিষ্টতা দান করেছে। মায়ানমারকে এই অঞ্চলে অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ ও স্থিতিশীল করে তুলতে আপনার দৃঢ় বাসনা ওসুস্পষ্ট চিন্তাভাবনা এই যুগের আরেকটি বৈশিষ্ট্য। মায়ানমারের নতুন সরকার যাত্রা শুরু করেছে কয়েকটি বিশেষ লক্ষ্যে : • নতুন নতুন প্রতিষ্ঠান গঠন এবং বর্তমান প্রতিষ্ঠানগুলিরশক্তি বৃদ্ধি; • অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির উদ্দেশ্যে নির্দিষ্টপন্থাপদ্ধতির অনুসন্ধান; এবং সর্বোপরি • আধুনিক জাতি গঠনের জন্য এক উচ্চাকাঙ্ক্ষার অনুসরণ। আমাদেরদ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার বিষয়গুলি নিয়ে মাননীয় প্রেসিডেন্ট এবং আমি সামগ্রিকভাবেআলোচনা সেরে ফেলেছি। নিরাপত্তারক্ষেত্রে আমাদের দু’দেশের স্বার্থ যে পরস্পরের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সে কথাও আমরাস্বীকার করে নিয়েছি। পরস্পরেরকৌশলগত স্বার্থ এবং উদ্বেগ-আশঙ্কার বিষয়গুলির প্রতি সংবেদনশীল হয়ে ওঠার প্রশ্নেওএকমত হয়েছি আমরা। এইলক্ষ্যে আমাদের দু’দেশের জনসাধারণের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার জন্যআমরা একযোগে কাজ করেযাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি । এইঅঞ্চলে হিংসা ও সন্ত্রাসের সাধারণ চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় সক্রিয়ভাবে সহযোগিতারপ্রশ্নেও একমত হয়েছি আমরা। একুশশতকের প্যাংলং সম্মেলনের কর্মসূচি অনুযায়ী শান্তি প্রচেষ্টা ও প্রক্রিয়ায় ভারতেরপূর্ণ সমর্থনের কথাও আমি ব্যক্ত করেছি। এইসম্পর্কের ব্যাপ্তি ও গভীরতাকে রূপ ও আকার দিয়েছে আমাদের বলিষ্ঠ উন্নয়ন সহযোগিতারসম্পর্ক যার মূলে রয়েছে “জনসাধারণই প্রথম”– এই বিশেষ দর্শন ও উপলব্ধিটি। ভারতের২ বিলিয়ন ডলারের মতো উন্নয়ন সহায়তা ঘোষণা করা হয়েছে মায়ানমারের সাধারণ অধিবাসীদেরজীবনযাত্রাকে স্পর্শ করার লক্ষ্যেই । সংযোগও যোগাযোগ, পরিকাঠামো, দক্ষতা ও ক্ষমতা বৃদ্ধি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিষেবা এবংসংশ্লিষ্ট বিভিন্ন ক্ষেত্রেরপ্রকল্পগুলিতে প্রসারিত আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক। আমাদেরঅংশীদারিত্বের কয়েকটি সুনির্দিষ্ট দৃষ্টান্ত হল : • কালাডান প্রকল্প, বন্দর ও জলপথ সম্পর্কিত এইপ্রকল্পটির কাজ সম্পূর্ণ হতে চলেছে এ বছরের শেষের দিকে; • ভারত-মায়ানমার-থাইল্যান্ড ত্রিপাক্ষিক মহাসড়কপ্রকল্প; • মায়ানমারের তথ্যপ্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান; • কৃষিশিক্ষা ও গবেষণা সংক্রান্ত এক উৎকর্ষকেন্দ্র;এবং • শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং শিল্প প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রেবিভিন্ন ক্ষুদ্র প্রকল্প। আমাদেরকর্মসূচি রূপায়ণ সংক্রান্ত যে দুটি চুক্তি আজ স্বাক্ষরিত হয়েছে আজ তা ৬৯টি সেতুরনির্মাণ ও উন্নয়ন এবং ত্রিপাক্ষিক মহাসড়ক প্রকল্পের কালেওয়া-ইয়ারগি অংশটিরনির্মাণে বিশেষ সহায়ক হবে। কৃষি,বিদ্যুৎ, জ্বালানি এবং ব্যাঙ্কিং ক্ষেত্রেও আমাদের সহযোগিতাকে আরও গভীর করে তুলতেসঙ্কল্পবদ্ধ আমরা। পুনর্নবীকরণযোগ্যজ্বালানি এবং প্রাচীন চিকিৎসাপদ্ধতি সম্পর্কিত সহযোগিতা চুক্তিগুলি সংশ্লিষ্টক্ষেত্রগুলিতে আমাদের অংশীদারিত্বকে আরও গতিশীল করে তুলবে। ডালশস্যেরবাণিজ্যের ক্ষেত্রে পারস্পরিক কল্যাণ সম্ভব করে তুলতে আমরা এক দীর্ঘস্থায়ীব্যবস্থা গড়ে তুলতেও সম্মত হয়েছি। এবছরএপ্রিল মাসে মায়ানমারের তামু-তে বিদ্যুৎ সরবরাহের লক্ষ্যে একটি ছোট্ট পদক্ষেপওগ্রহণ করেছি আমরা। আমাদেরবিদ্যুৎ যোগান ব্যবস্থাকে যে আরও যথেষ্ট মাত্রায় উন্নত করে তুলতে আমরা আগ্রহী সেসম্পর্কে মাননীয় প্রেসিডেন্টকে অবহিত করেছি আমি। মায়ানমারেরসঙ্গে উন্নয়ন সহযোগিতার প্রসারে ভারত সর্বদাই প্রস্তুত। মায়ানমারেরসরকারের অগ্রাধিকারের ভিত্তিতেই এই কাজে অংশগ্রহণ করতে আগ্রহী আমরা। আমাদেরপারস্পরিক সম্পর্কের মূল কেন্দ্রের আরেকটি বিষয় হল সংস্কৃতি। আমাদেরসহযোগিতার সম্পর্কের মধ্য দিয়ে মায়ানমারের বাগান-এ আনন্দ মন্দিরের সংস্কার ওপুনরুদ্ধার সম্ভব হতে চলেছে একথা জানতে পেরে আমি আনন্দিত। গতসপ্তাহের ভূমিকম্পে বিধ্বস্ত মায়ানমারের ঐতিহাসিক স্মারক ও বৌদ্ধ মন্দিরগুলিরসংস্কার ও পুনরুদ্ধারেও প্রস্তুত আমরা। আজআমাদের আলোচনা ও মতবিনিময় দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতার রূপরেখা এবং কার্যপরিকল্পনা গড়েতুলতে দুটি দেশকেইবিশেষভাবে সাহায্য করবে। আমাদেরসম্পর্ককে এখন এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করতে আপনার সঙ্গে একযোগে কাজ করে যেতে আমিবিশেষভাবে উৎসুক ও আগ্রহী। মায়ানমারেরউজ্জ্বল ভবিষ্যৎ শুধু আপনারই লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য নয়। একইসঙ্গেতা আমাদেরও আশা-আকাঙ্ক্ষা। মাননীয়প্রেসিডেন্ট, আরও একবার আপনাকে জানাই ভারতে সাদর ও আন্তরিক অভিনন্দন। নয়াদিল্লি, ১৩ এপ্রিল, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতীয় হকি দলকে আজলান শাহ কাপে ভালো ফলাফলের জন্য অভিনন্দন জ্ঞাপন করেন। শ্রী মোদী বলেন, “জার্মান সি.ই.ও.-দের সঙ্গে বৈঠকের মাঝে আজলান শাহ কাপে ব্রোঞ্জ জেতার বার্তা পেলাম। ভারতীয় হকি দলকে শুভেচ্ছা জানাই।” গতকাল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন ভারতে সফররত ইরানের অর্থনীতি বিষয়ক এবং অর্থমন্ত্রী ডঃ আলি তায়েবনিয়া। ডঃ তায়েবনিয়া’কে প্রধানমন্ত্রী জানান, ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক দৃঢ় করতে ভারত অধিক গুরুত্ব দিয়ে থাকে। প্রসঙ্গক্রমে, তিনি এ বছর জুলাই-এ ব্রিক্স (ব্রাজিল, রাশিয়া, ভারত, চীন, দক্ষিণ আফ্রিকা) শিখর সম্মেলন চলাকালীন উফাতে রাষ্ট্রপতি রুহানি-র সঙ্গে তাঁর ফলপ্রসূ কথোপকথনের প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। ভগবান শিবের আশীর্বাদধন্য মীণাক্ষি – সুন্দরেশ্বর মন্দির যে শহরে বিদ্যমান, সেখানে আমি আসতে পেরে যথার্থাই আনন্দিত। এনডিএ সরকার স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের ওপর এই কারণেই বেশি গুরুত্ব দিচ্ছে, যাতে প্রত্যেকে সুস্থ থাকেন এবং কম খরচে স্বাস্থ্য পরিষেবা সকলের কাছে পৌঁছে দেওয়া যায়। বিভিন্ন রাজ্য এ ধরণের রোগগুলির মোকাবিলার জন্য যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে, তাকে সম্পূর্ণভাবে সমর্থন করবে কেন্দ্র সরকার। সীমান্ত সড়ক সংগঠনের প্রতিষ্ঠা দিবসে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মীকে অভিবাদন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। “সীমান্ত সড়ক সংগঠনের প্রতিষ্ঠা বার্ষিকীতে সেখানকার সমস্ত কর্মীকে আমার অভিবাদন। ডকও বন্দর কর্মীদের ২০১৪-১৫থেকে ২০১৫-১৬সাল পর্যন্ত উৎপাদন-ভিত্তিকপুরস্কার দান সম্পর্কিতকর্মসূচিটি আজ অনুমোদিত হয়েছেকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায়।প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদীর নেতৃত্বে বৈঠকটি অনুষ্ঠিতহয়। ভারত ও প্যালেস্টাইনের মধ্যেযুব বিষয়ক ও ক্রীড়া ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য স্বাক্ষরিত সমঝোতা বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে আয়োজিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠককে আজ অবহিত করাহয়। সবার জন্য রইলনবরাত্রির শুভেচ্ছা। নবরাত্রিরপ্রথম দিনটিতে আমরা মা শৈইলপুত্রির কাছে প্রার্থনা জানাই। বুধবারের এই মতবিনিময় অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন ক্ষেত্রের কাজকর্ম ও অগ্রগতি পর্যালোচনার সময়, ডাক পরিষেবা সংক্রান্ত অভিযোগের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেন। সমাজের দরিদ্রতর শ্রেণীর মানুষের জন্য ডাক পরিষেবাকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আখ্যা দিয়ে তিনি ডাক বিভাগকে মানি অর্ডার, ডাকঘর সঞ্চয় ব্যাঙ্কে সেভিংস অ্যাকাউন্ট ও ডাক পরিষেবায় বিলম্বের মতো ক্ষেত্রগুলিতে পরিষেবার মান বাড়াতে নির্দেশ দেন। প্রধানমন্ত্রী পশ্চিমবঙ্গ, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানা, ঝাড়খন্ড, ওডিশা, ছত্তিশগড়, মহারাষ্ট্র, তামিলনাডু, উত্তরাখন্ড, রাজস্থান, গুজরাট, গুজরাট, হরিয়ানা ও উত্তর প্রদেশে ছড়িয়ে থাকা রেল, সড়ক, শক্তি, টেলিযোগাযোগ এবং কৃষির সঙ্গে যুক্ত গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। রেলের পশ্চিমাঞ্চলীয় ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডর এবং চেন্নাই মেট্রোরেল প্রকল্পের কাজের অগ্রগতিও তিনি খতিয়ে দেখেন। শ্রী মোদী চালু এই প্রকল্পগুলির কাজ দ্রুত শেষ করার আহ্বান জানান। উগ্র বামপন্থা অধ্যুষিত অঞ্চলে মোবাইল পরিষেবা প্রকল্পের অগ্রগতি পর্যালোচনা করতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষ বিশেষ করে, অনগ্রসর অঞ্চলের মানুষের জন্য মোবাইল যোগাযোগ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তিনি মোবাইল পরিষেবা প্রকল্পের রূপায়ণ ত্বরান্বিত করতে সংশ্লিষ্ট সব রাজ্যের প্রতি আহ্বান জানান। অসম, উত্তর প্রদেশ ও কর্ণাটকের তিনটি পুলিশ থানার সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘ক্রাইম অ্যান্ড ক্রিমিনাল ট্র্যাকিং নেটওয়ার্ক অ্যান্ড সিস্টেম’ প্রকল্পের অগ্রগতি সম্বন্ধেও প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। প্রধানমন্ত্রীর শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার(২৭ জুন)কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও জামার্নির মধ্যে অ-সামরিক বিমান পরিবহন ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র বা মৌ স্বাক্ষরের বিষয়টি অনুমতি মিলেছে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে ভারত ও জামার্নির মধ্যে বিমান পরিবহন ক্ষেত্রের নিরাপত্তা, দক্ষতা ও মানোন্নয়নে প্রসার ঘটবে। এই মহান দেশেআরও একবার আসতে পেরে আমি আনন্দিত। এখানে এত পরিচিত মুখ দেখতে পাওয়াও এক খুশিরবিষয়। এই সুযোগদানের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই সিআইআই ও কিডানরেন-কে। আপনাদের সঙ্গেযোগাযোগকে আমি সর্বদাই ফলপ্রসূ বলে মনে করি। বহু বছর ধরেইআমি জাপানে এসেছি বেশ কয়েকবার। সত্যি কথা বলতে কি, জাপানের সরকার, নেতৃবৃন্দ,শিল্প এবং জনসাধারণের সঙ্গে আমার ব্যক্তিগত যোগাযোগ প্রায় গত এক দশকের। ‘জাপান’ এইশব্দটি গুণ, উৎকর্ষ, সততা ও সংহতিরই প্রতিফলন। নিরন্তরউন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্বকে পথ দেখিয়েছেন জাপানের সাধারণ মানুষ। তাঁদের রয়েছে সুন্দরআচরণের পাশাপাশি সামাজিক দায়িত্ব সম্পর্কে এক গভীর বোধ ও অনুভূতি। বিশ্বেরঅন্যান্য প্রান্তের, বিশেষত এশিয়া ও আফ্রিকার উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় জাপানের বিশালঅবদানের কথা আমাদের সকলেরই পরিচিত বিষয়। ভারতের মৌলিকমূল্যবোধ গভীরভাবে প্রোথিত আমাদের সভ্যতার ঐতিহ্যের মধ্যে। তাতে প্রেরণা সঞ্চার করেছেগৌতম বুদ্ধ এবং মহাত্মা গান্ধীর সত্য ও সততার শিক্ষাদর্শ। গণতান্ত্রিকঐতিহ্য, সম্পদ ও মূল্যবোধের ওপর গুরুত্ব, উদ্যোগ স্থাপনের কাজে উৎসাহ এবং আধুনিকঅর্থনীতি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে অনুসন্ধান প্রচেষ্টার মধ্যেই রয়েছে ভারতের মূল শক্তি। এই কারণেই ভারতও জাপান পরস্পরের সঙ্গে যুক্তভাবে কাজ করতে আগ্রহী। অতীত আমাদেরশিক্ষা দিয়েছে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার। বর্তমান আমাদেরউৎসাহিত করেছে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করে যাওয়ার। আমি বারবারএকথাই বলে আসছি যে, একুশের শতক হল এশিয়ার শতক। আন্তর্জাতিক বিকাশের এক নতুনপীঠস্থান হয়ে উঠেছে এশিয়া। ভারত বর্তমানেবেশ কিছু পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমরা এমন কিছু বলিষ্ঠ পদক্ষেপ গ্রহণকরেছি ও প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি, যা ভারতের সম্ভাবনাকে বাস্তবায়িত করতেসাহায্য করবে। এর সুফলও আমরা ইতিমধ্যে লক্ষ্য করেছি। বিশ্বেরঅর্থনৈতিক পরিস্থিতি যখন খুবই দুর্বল, তখন বলিষ্ঠ অগ্রগতি ও প্রচুর সুযোগ-সুবিধারবার্তা বহন করতে পারে ভারত। অফুরন্ত সুযোগ-সুবিধা এবং বিশ্বাসযোগ্য নীতির বার্তাতুলে ধরতে পারে আমাদের দেশ। ২০১৫ সালেবিশ্বের অন্যান্য বড় বড় অর্থনীতির তুলনায় ভারতীয় অর্থনীতি বিকাশ লাভ করেছেদ্রুততার সঙ্গে। বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের মতে আগামী দিনেও এইধারা অব্যাহত থাকবে। শ্রমের পারিশ্রমিক খাতে স্বল্প ব্যয়, বিশাল দেশীয় বাজার এবংবৃহদায়তন অর্থনৈতিক স্থিতিশীলতা ভারতকে এক আকর্ষণীয় বিনিয়োগ গন্তব্য রূপে তুলেধরেছে বিশ্বের কাছে । বিগত দুটি অর্থবছরে প্রায় ৫৫ বিলিয়ন ডলারের মতো প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আমরা লাভ করেছি। এটিশুধুমাত্র সর্বোচ্চ পরিমাণ প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নয়, ভারতে প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগের হার বৃদ্ধির ক্ষেত্রেও তা হল সর্বোচ্চ। ভারতের কৌশলঅনুসরণ করছে বর্তমানে প্রত্যেকটি বিদেশি সংস্থাই। জাপানি সংস্থাগুলিও তারব্যতিক্রম নয়। জাপান যে বর্তমানে ভারতের চতুর্থ বৃহত্তম প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগের উৎসভূমি, এতে আজ আশ্চর্য হওয়ার কিছুই নেই। জাপানের এইবিনিয়োগ ঘটেছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নির্মাণ, উৎপাদন ও পরিষেবা থেকে বিমা ও পরিকাঠামোএবং ই-কমার্স থেকে ইক্যুইটি। আমাদের প্রয়োজনআরও বেশি মাত্রায় জাপানি বিনিয়োগ। এই লক্ষ্যে আপনাদের উদ্বেগ নিরসনে আমরা সক্রিয়উদ্যোগ গ্রহণ করব। জাপানি শিল্পনগরী সহ বিভিন্ন বিশেষ বিশেষ প্রকল্প আমরা গড়ে তুলব। ১০ বছর মেয়াদিবাণিজ্যিক ভিসা, বৈদ্যুতিন পর্যটন ভিসা এবং জাপান থেকে পর্যটক আগমনের পর তাঁদেরজন্য ভিসার মতো সুযোগগুলির সদ্ব্যবহারের জন্য আমি আপনাদের উৎসাহিত করব। ভারতে উন্নয়নেরচাহিদা হল বিশাল। এ সমস্ত কিছুই অফুরন্ত সুযোগ-সুবিধা নিয়ে উপস্থিত জাপানি শিল্প সংস্থাগুলিরকাছে। জাপানি প্রযুক্তিতে ভারতে উৎপাদন – এই বিষয়টির ইতিমধ্যেই সূচনা হয়েছে এবংদুটি দেশের মিলনে তা চমৎকারভাবে কাজ করেছে। ভারতে তৈরি এক জাপানি সংস্থার গাড়ি ইতিমধ্যেই বিক্রি হয়েছে জাপানে। আপনাদেরমধ্যে যাঁরা ইতিমধ্যেই ভারতে আসার সুযোগ গ্রহণ করেছেন, তাঁদের আমি ধন্যবাদ জানাই। যাঁরা এখনও চিন্তাভাবনা করছেন, তাঁদের আমি প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি যে ‘মেক ইনইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে আরও জোরদার করে তুলতে আমাদের নীতি ও পদ্ধতিগুলিকে নতুন করেসাজিয়ে তুলতে আমরা অঙ্গীকারবদ্ধ। ব্যবসা-বাণিজ্যের উপযোগী এক পরিবেশ গড়ে তোলা এবং বিনিয়োগ আকর্ষণ করার মতোবিষয়গুলি রয়েছে আমার বিশেষ অগ্রাধিকারের তালিকায়। আমাদের স্থিতিশীল, সহজ এবংস্বচ্ছ নিয়মনীতি ভারতের বাণিজ্যিক কজকর্মের প্রকৃতিকে এক আকর্ষণীয় রূপ দিয়েছে। বৈদ্যুতিন প্রশাসন এখন আর নিছক কল্পনার বিষয় নয়, বরং তা এক বাস্তব সত্য হয়েউঠেছে। পণ্য ও পরিষেবা কর (জিএসটি) সম্পর্কে আমরা এক নতুন বিধি প্রণয়ন করেছিসাফল্যের সঙ্গেই। যে দেউলিয়া কোডটি সম্প্রতি অনুমোদিত হয়েছে, তা বিনিয়োগকারীদের বিনিয়োগ থেকেবিরত থাকার পথকেও প্রশস্ত করে দিয়েছে। বিভিন্ন বাণিজ্যিক বিষয়ের দ্রুত নিষ্পত্তিরলক্ষ্যে আমরা স্থাপন করছি বাণিজ্য আদালত ও বাণিজ্যিক ডিভিশন। মধ্যস্থতার মাধ্যমে আপোষ নিষ্পত্তির বিষয়গুলিতে গতি সঞ্চারের লক্ষ্যেমধ্যস্থতা আইনের সংশোধনও করা হয়েছে। এবছর জুন মাসে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগেরবিধিনিয়ম আমরা আরও শিথিল করে তুলেছি। আমরা ঘোষণা করেছি এক নতুন মেধাসম্পদ অধিকারআইনের । অর্থনৈতিক সংস্কারের লক্ষ্যে ভারত কোন পথে এগিয়ে চলেছে এ সমস্ত কিছু তারইপরিচয় বহন করে। ভারতকে বিশ্বের সবচেয়ে উদার এক অর্থনীতিতে রূপান্তরিত করতে আমিসংকল্পবদ্ধ। আমাদের এই প্রচেষ্টার ফল অনুভূত ও স্বীকৃত হচ্ছে সমগ্র বিশ্বে। · প্রত্যক্ষবিদেশি বিনিয়োগ খাতে ইক্যুয়িটির পরিমাণ গত দু’বছরে বৃদ্ধি পেয়েছে ৫২ শতাংশ। · বিশ্বব্যাঙ্কের সমীক্ষা অনুযায়ী, বিশ্ব অর্থনীতির সূচকে ভারত অতিক্রম করেছে ১৯টি ধাপ। · বাণিজ্যিককাজকর্ম সহজতর করে তোলার ক্ষেত্রে প্রভূত উন্নতিও সম্ভব করে তুলেছি আমরা। র‍্যাঙ্কিং-এরদিক থেকে আমদের অবস্থান এখন যথেষ্ট উন্নত। আমি বহুদিন ধরেই বলে আসছি যে, ভারতের প্রয়োজন আরও বড় আকারের শিল্পায়ন, গতিও দক্ষতা । এই তিনটি ক্ষেত্রেই এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারে জাপান। ডেডিকেটেড ফ্রেইড করিডর, দিল্লি, মুম্বাই শিল্প করিডর, মেট্রো রেল এবংউচ্চগতির রেল আমাদের ক্ষেত্র, আয়তন ও গতিকে সূচিত করে। এখানে উপস্থিত জাপানের শিল্প ও বাণিজ্যিকনেতৃবৃন্দ আমার সঙ্গে এই বিষয়ে নিশ্চয়ই সহমত হবেন যে, জাপানের প্রযুক্তি এবং ভারতেরমানব-সম্পদ মিলিতভাবে বিশ্ব জয় করে ফেলতে পারে। আমি এর আগেও বলেছি যে, আপনাদের হার্ডওয়্যার এবং আমাদের সফ্‌টওয়্যারমিলিতভাবে চমৎকার কাজ করতে পারে। এর ফলে, লাভবান হবে দুটি দেশই। আসুন, আমরা আন্তরিকতার সঙ্গে আরও শক্তিশালী করে তুলি আমাদের সহযোগিতারসম্পর্ক। বৃহত্তর সুযোগ ও সম্ভাবনা এবং উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্যে আসুন আমরাযাত্রা করি একসঙ্গে। কর ফাঁকির বিরুদ্ধে আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করল ভারত। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার প্রথম কেনিয়া সফরে আপনাদের সঙ্গে এখানে মিলিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। ভারতীয়, বিশেষত গুজরাটিদের দ্বিতীয় স্বদেশ ভূমি হল কেনিয়া। এই দৃষ্টিকোণ থেকে বিচার করলে এই দেশ সফরে আমার কিছুটা বিলম্ব হয়ে গেছে। প্রায় ৩৫ বছরের দীর্ঘ সময়কালে আর কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী এ দেশ সফরে আসেননি। তবে ব্যক্তিগত পর্যায়ে কেনিয়ার সঙ্গে আমার যোগাযোগ বহুদিনের। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী রূপে আমি কেনিয়া সফরে এসেছিলাম ২০০৮-এ। এখানকার কয়েকটি প্রতিনিধিদলকেও আমি স্বাগত জানিয়েছিলাম গুজরাটে। কেনিয়ার অর্থনীতি ও পরিকাঠামো সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে এক বিশেষ প্রভাবেরছাপও রেখেছে। আপনারা হলেন একমাত্র বিকাশশীল একটি দেশের নাগরিক, যেখানে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সংস্থাগুলির সদর দপ্তর রয়েছে। ভারত ও কেনিয়ার মধ্যে রয়েছে এক বিশেষ ধরনের মৈত্রী সম্পর্ক। মাননীয় প্রেসিডেন্ট, আপনার সরকার প্রাত্যহিক জীবনে সৌরশক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছে একথা আমার অজানা নয়। আমরাও পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে এক উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক কর্মসূচি রূপায়ণের কাজে যুক্ত রয়েছি। ভারত ও কেনিয়া দুটি দেশেই রয়েছে পর্যাপ্ত সূর্যালোক। বিশ্ব উষ্ণায়নের মতো সমস্যার প্রকৃত সমাধানই হল সৌরশক্তির প্রয়োগ ও ব্যবহার। শুধু তাই নয়, দূর-দূরান্তের প্রত্যন্ত গ্রামগুলিতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার কাজেও সৌরশক্তির এই প্রকৌশল ব্যবহার করা যেতে পারে। আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতার আওতায় এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে আমরা কাজ করতে পারি যুক্তভাবে। স্বাস্থ্য হল আরেকটি বিশেষ ক্ষেত্র যেখানে আমাদের বিশেষ আগ্রহ রয়েছে। একথা জানতে পেরে আমি খুশি যে কেনিয়ার হাজার হাজার রোগী ভারতে সফল চিকিৎসার পর আবার দেশে ফিরে এসেছেন। চিকিৎসা ক্ষেত্রে ভারতীয় অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগিয়ে এই অঞ্চলের একটি বিশেষ চিকিৎসাকেন্দ্র রূপে পরিচিতি পেতে কেনিয়া যে আগ্রহী, এই তথ্যও আমার কাছে এসেছে। এই প্রচেষ্টা ও প্রক্রিয়ায় আমরা আপনাদের সাহায্য ও সহযোগিতা করতে পারলে খুশিই হব। আমাদের সম্পর্কের গভীরতা ও সহযোগিতার সম্ভাবনার এগুলি হল কয়েকটি মাত্র দিক। আমরা একত্রে এই মানব মূলধনকে শিক্ষিত ও প্রশিক্ষিত করে তুলতে পারি যাতে তা সমগ্র বিশ্বের চাহিদা পূরণেযোগ্যতর হয়ে উঠতেপারে। ভারত বর্তমানে দ্রুততম গতিতে বেড়ে ওঠা বিশ্বের এক বৃহৎ অর্থনীতি। আমাদের দেশে বিকাশের হার যে এখন উচ্চমাত্রায় রয়েছে তাই নয়, বিশ্বমান অনুযায়ী আমাদের উত্থান আরও বিভিন্ন ক্ষেত্রে। গত দু’বছরে ভারতে পরিবর্তন এসেছে অনেক দিক থেকেই। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভারতই হল এখন প্রথম পছন্দের জায়গা। ২০১৫ সালে আমাদের দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এসেছে সর্বোচ্চ মাত্রায়। এর বাইরেও আপনাদের জন্য যে সুখবরটি অপেক্ষা করছে তা হল এই যে ভারত হল কেনিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্য সহযোগী। শুধু তাই নয়, এ দেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশও হল ভারত। আমাদের দু’দেশের মধ্যে ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে যে ভারসাম্যের অভাব রয়ে গেছে তা দূর করার সুযোগ পেলে আমরা আনন্দিত হব। কারণ, কেনিয়ায় বিনিয়োগের মাত্রা বাড়াতে আমরা বিশেষভাবে আগ্রহী। আমি আজ এখানে কেনিয়ার সরকার ও জনসাধারণকে এই মর্মে আশ্বাস দিয়ে যাচ্ছি যে ভারত সকল সময়ে রয়েছে আপনাদের পাশে। আমাদের এই মৈত্রী সম্পর্ক থেকে লাভবান হবে দুটি দেশই। ভারতে পঠন-পাঠনরত কেনিয়ার ছাত্রছাত্রী এবং কেনিয়ায় কর্মরত ভারতীয় পেশাদার – দু’পক্ষেরই ভবিষ্যৎ হয়ে উঠবে উজ্জ্বলতর। খনি, খনিজ কিংবা যন্ত্রপাতি– যাই হোক না কেন, আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এখানে সাফল্য নিয়ে আসবে। সুযোগ ও সম্ভাবনার অনুসন্ধানে যৌথভাবে উদ্যোগী হতে হবে আমাদের। আমার এই সফরকালে যে সমস্ত উদ্যোগ ও কর্মসূচিচূড়ান্ত করা হয়েছে, তাতেই প্রতিফলিত হয়েছে আমার এই বক্তব্যটি। আমি এই মর্মে কেনিয়াকে প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছি যে আপনাদের প্রচেষ্টাকে জোরদার করে তুলতে এবং আপনাদের সহায়সম্পদকে আরও সমৃদ্ধ করতে ভারত কাজ করে যাবে আপনাদের সঙ্গে। এই বইটি আমি কেনিয়ার মাননীয় প্রেসিডেন্টের হাতে সমর্পন করতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি। বাবু জগজীবন রামের মৃত্যু বার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বাবু জগজীবন রামের মতো মহান পুরুষের পুণ্যতিথিতে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আপনার সাদর স্বাগত সম্ভাষণের জন্য ধন্যবাদ জানাই। আপনি যেভাবে একজনবন্ধু হিসেবে আমাকে সঙ্গ দিয়েছেন এবং আপনার যে বিশেষ ও উদার মনোভাবের পরিচয় আমিপেয়েছি, সেজন্যও ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। গতকাল আপনি এবং মিসেস নেতানিয়াহু আমার জন্যযে একটি সুন্দর নৈশভোজের আয়োজন করেছিলেন তার কথাও আমার স্মরণীয় হয়ে থাকবে। গতকালরাতে আমাদের পারস্পরিক কথোপকথন, মিসেস নেতানিয়াহুর সঙ্গে আমার সাক্ষাৎ এবং আপনারপরিবার-পরিজন সম্পর্কে পরিচিত হওয়ার সুযোগ লাভ ঘটেছে আমার। বিশেষত, আমার নিজেরঅভিজ্ঞতায় দেখা আপনাদের এই সুন্দর দেশটিকে এক নতুন মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যেআপনার পিতা যেভাবে কাজ করে গেছেন সে সম্পর্কেও আপনি আলোচনা করেছেন আমার সঙ্গে।প্রতিকূলতাকে জয় করে অগ্রগতি, উদ্ভাবন এবং বিকাশের লক্ষ্যে যেভাবে আপনার দেশেরনাগরিকরা সমস্ত বাধা-বিঘ্নকে তুচ্ছ জ্ঞান করে সাফল্য এনে দিয়েছেন, সেজন্য ভারতআপনাদের প্রশংসা করে। আমার এই ইজরায়েল সফর এক কথায় এক অসাধারণ অভিজ্ঞতার সাক্ষী।এজন্য আমি নিজেকে বিশেষভাবে সম্মানিত বোধ করছি। আধুনিককালের এই যাত্রাপথে আমাদেরদুটি দেশের পথ হয়তো ভিন্ন, কিন্তু অর্থনৈতিক অগ্রগতি এবং গণতান্ত্রিক মূল্যবোধেআমাদের বিশ্বাসের মধ্য দিয়েই আমরা এগিয়ে যেতে পেরেছি মিলিতভাবে। আমার এই সফরহল এমন এক উদযাপন যা : · আমাদের মৈত্রী সম্পর্ককে আরও নতুন ও নিবিড় করে গড়ে তোলার সুযোগ এনে দিয়েছে; · আমাদের মৈত্রী সম্পর্কের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যয়ের সূচনা করেছে; এবং · কর্মপ্রচেষ্টার নতুন নতুন ক্ষেত্রগুলিতে যৌথভাবে এগিয়ে চলার সাহসযুগিয়েছে। এক বিস্তৃতকর্মসূচি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর সঙ্গে আমার আলোচনা ও মতবিনিময় ফলপ্রসূহয়েছে। শুধুমাত্র দ্বিপাক্ষিক সুযোগ-সুবিধা প্রসারের মধ্যেই আমাদের এই আলোচনাসীমাবদ্ধ ছিল না। আমরা আলোচনা করেছি বিশ্ব শান্তি ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে আমাদেরসহযোগিতা কিভাবে এক সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে সে সম্পর্কেও। আমাদের লক্ষ্য হলএমন এক সম্পর্ক গড়ে তোলা যার মধ্যে প্রতিফলিত হবে আমাদের মিলিত অগ্রাধিকারগুলি।সেইসঙ্গে, প্রতিফলন ঘটবে দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে নিবিড় বন্ধনেরও। জল, কৃষিপ্রযুক্তি এবং উদ্ভাবন প্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ইজরায়েল রয়েছে অগ্রণী দেশগুলিরতালিকায়। এই বিষয়গুলিকে আমি অন্তর্ভুক্ত করেছি ভারতের উন্নয়ন প্রচেষ্টার অগ্রাধিকারগুলিরমধ্যেও। জল ও সম্পদের ব্যবহার, বিশুদ্ধ জল ও তার সংরক্ষণ এবং কৃষির উৎপাদনশীলতারমতো বিষয়গুলি যে আমাদের দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে আরও গভীরে নিয়ে যেতে সক্ষম সেসম্পর্কেও সহমত পোষণ করেছি আমরা। আমাদের দু’দেশের বিজ্ঞানী ও গবেষকরা দ্বিপাক্ষিককল্যাণের স্বার্থে উদ্ভাবন ও রূপায়ণের বিষয়গুলিকে যে এক নতুন মাত্রা উন্নীত করতেপারেন, সেই প্রশ্নেও একমত হয়েছি আমরা উভয়েই। আমাদের এই লক্ষ্য পূরণে বিশেষভাবেসাহায্য করবে গবেষণা ও শিল্পোন্নয়নের কাজে ৪০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের একদ্বিপাক্ষিক প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন তহবিল গড়ে তোলার মিলিত সিদ্ধান্ত। আমরা উভয়েই মনেকরি যে আমাদের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তুলতে পারে দ্বিপাক্ষিকবাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রসার। আগামীকাল সিইও ফোরামের বৈঠকে এই বার্তাইপৌঁছে দেব আমরা। এক জটিলভৌগোলিক অস্তিত্ব রয়েছে ভারত ও ইজরায়েল এই দুটি দেশের। আঞ্চলিক শান্তি ওস্থিতিশীলতার বিরুদ্ধে বিভিন্ন কৌশলগত হুমকি সম্পর্কেও আমরা এখন পূর্ণ মাত্রায়সচেতন। সন্ত্রাসবাদীদের হিংসা ও ঘৃণার কদর্য রূপ প্রত্যক্ষ করেছে ভারত। আমাদের কৌশলগত স্বার্থকে সুরক্ষিত রাখতে এবং সাইবারমহাকাশ সহ ক্রমবর্ধমান সন্ত্রাস ও উগ্রবাদের মোকাবিলায় সহযোগিতার মাত্রাকে দ্বিগুণকরে তুলতে সম্মতি প্রকাশ করেছি আমি এবং প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু । এখানেই চির বিশ্রাম লাভ করেছেন ৪৪জন ভারতীয় সেনা যাঁরা প্রথম বিশ্বযুদ্ধকালে ঐ শহরটিকে মুক্ত করার সংগ্রামেআত্মবলিদান দিয়েছিলেন। আগামীকাল আমি হাইফা সফরে গিয়ে সেই বীর ভারতীয় সেনানীদেরপ্রতি আমার শ্রদ্ধা ও সম্মান নিবেদন করব। মাননীয়প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, এই সুযোগে আমি আপনাকে এবং মিসেস নেতানিয়াহুকেসপরিবারে ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানাই। আপনাদের সাদর সম্ভাষণ এবং ঊষ্ণ আতিথেয়তারজন্য আমি আরও একবার ধন্যবাদ জানাই আপনাদের। অনেক অনেকধন্যবাদ। টেলসা মোটরস পরিদর্শনে জম্মু ও কাশ্মীরের বিরোধী দলগুলির প্রতিনিধিরা আজ এখানে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। প্রতিনিধিদলেরসঙ্গে আলোচনায় যে সমস্ত গঠনমূলক প্রস্তাব পেশ করা হয় তার প্রশংসা করে জম্মু ওকাশ্মীরের জনসাধারণের কল্যাণে তাঁর সরকারের প্রতিশ্রুতির কথা পুনর্ব্যক্ত করেন শ্রীমোদী । জম্মুও কাশ্মীরের বর্তমান পরিস্থিতির উন্নয়নে আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ওপর বিশেষ জোরদিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাংবিধানিক কাঠামোর মধ্যে রাজ্যের সমস্যার একটি স্থায়ী ওশান্তিপূর্ণ সমাধান একান্ত জরুরি। চলচ্চিত্র ও বিনোদন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত এক প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার মুম্বাই-এ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রতিনিধিদলে বিনোদন শিল্পের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সংস্হার সিইও-রা ছাড়াও চলচ্চিত্র নির্মাতারাও ছিলেন। অদূর ভবিষ্যতে ভারতকে ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার যে পরিকল্পনা প্রধানমন্ত্রী নিয়েছেন, প্রতিনিধিদলটি সে বিষয়ে তাঁদের জোরালো সমর্থন ব্যক্ত করেন। ভারতে গণমাধ্যম এবং বিনোদন ক্ষেত্রে যে বিপুল বিকাশের সম্ভাবনা রয়েছে, সেকথা উল্লেখ করে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বলেন, ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতিতে পরিণত করার ক্ষেত্রে এই ক্ষেত্রটি গুরুত্বপূর্ণ অবদান যোগাতে পারে। বিনোদন শিল্পের জন্য অভিন্নহারে জিএসটি এবং বর্তমান হার কমানোর ব্যাপারে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জোরালো সওয়াল করেন। মুম্বাইকে বিশ্ব বিনোদন ক্ষেত্রের রাজধানীতে পরিণত করতে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা বিভিন্ন উদ্যোগ ও ইতিবাচক প্রয়াস গ্রহণের জন্য আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্বেই ভারতীয় বিনোদন শিল্পের ব্যাপক জনপ্রিয়তা রয়েছে। বিশ্বে ভারতের সফ্ট পাওয়ার হিসাবে উত্থানের ক্ষেত্রে বিনোদন শিল্প গুরুত্বপূর্ণ একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিধিদলটিকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার গণমাধ্যম এবং বিনোদন শিল্পের পাশেই রয়েছে এবং তাদের প্রস্তাবগুলি গুরুত্বের সঙ্গে বিবেচনা করবে। ভারত-মার্কিন বাণিজ্য পর্ষদের বোর্ড সদস্যরা আজ নতুন দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। মুম্বাইতে চলতি সপ্তাহের প্রথম দিকে ‘ইন্ডিয়া আইডিয়া ফোরামে’র বৈঠকে গৃহীত বিভিন্ন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তারা প্রধানন্ত্রীকে অবগত করেন। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা ভারত-মার্কিন বাণিজ্যের পরিমান ৫০০ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে নিয়ে যেতে একটি পরিকল্পনা গ্রহণের ব্যাপারে আগ্রহ প্রকাশ করেন। কথাপ্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সরকারের গৃহীত সংস্কারমূলক বিভিন্ন কর্মসূচীর ব্যাপারে তাদের জানান। ভারতে বিনিয়োগের বিপুল সম্ভাবনার উল্লেখ করে, প্রধানমন্ত্রী মার্কিন বিনিয়োগকারীদের ভারতে বিনিয়োগের অনুরোধ জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয়মন্ত্রীসভা ইনস্টিটিউট অফচার্টার্ড অ্যাকান্ট্যান্টস অফ ইন্ডিয়া (আই.সি.এ.আই.) মাননীয় প্রেসিডেন্ট ম্যাগাফুলি এবং সম্মানিত অতিথিবৃন্দ। আজ রবিবার হওয়া সত্ত্বেও আমাদের সকলের জন্য সময় বের করে নিয়ে উপস্থিত হয়েছেন আপনারা। এজন্য আমি কৃতজ্ঞ আপনাদের কাছে। এই মানসিক শক্তিতে উদ্বুদ্ধ হয়েই আমি উপস্থিত হয়েছি তানজানিয়ায়। আমাদের দু’দেশের সম্পর্কের মধ্যে রয়েছে এক ঐতিহাসিক শিকড়। বহু শতাব্দী ধরেই আমাদের এই দুটি দেশের নাগরিক পরস্পরের সঙ্গে পরিচিত। আমাদের মিলন ও সংযোগ ঘটিয়েছে ভারত মহাসাগরের জলরাশি। আমাদের দুটি দেশেরই রয়েছে এক সমৃদ্ধ নৌ-ঐতিহ্য। বহু শতাব্দী ধরেই ভারত মহাসাগরের বুকে আমরা পাড়ি জমিয়েছি বাণিজ্যের উদ্দেশে। পরস্পর নির্ভরশীল বিশ্ব জগতের কথা এখন আমরা প্রায়ই বলে থাকি। আজ থেকে বহুকাল আগে অষ্টাদশ শতকে গুজরাটের মান্ডবী বন্দর এবং জঞ্জিবারের মধ্যে সম্পর্ক ছিল পরস্পর নির্ভরশীল তারা। প্রাচীন সাহিত্যের বর্ণনায় জানা যায় গুজরাটের মান্ডবী বন্দর কিভাবে আগ্রহের সঙ্গে প্রতীক্ষা করত স্বাহেলির বাণিজ্য পোত এসে পৌঁছনোর অপেক্ষায়। প্রাচীনকাল থেকেই আমার রাজ্য গুজরাট থেকে মানুষ আসতে শুরু করে আপনাদের এই মহান দেশে। আর আজ তানজানিয়ার ভারতীয় বংশোদ্ভূত সম্প্রদায় স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও বাণিজ্যের ক্ষেত্রে আমাদের দু’দেশের নাগরিকদের মধ্যে এক ঘনিষ্ঠ সেতুবন্ধনের কাজ করে চলেছে। সাম্প্রতিক দশকগুলিতে, প্রেসিডেন্ট নেরের সময় থেকেই আমাদের মিলিত মূল্যবোধ, সাধারণ সংগ্রাম এবং জনসাধারণের সমৃদ্ধি ও অগ্রগতির লক্ষ্যে আমাদের বলিষ্ঠ বাসনার মধ্যেইলুকিয়ে রয়েছে আমাদের দু’দেশের সম্পর্কের গূঢ় রহস্যটি। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে শিল্প, বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং উন্নয়ন সহযোগিতা এই দুটি দেশের মধ্যে বহুগুণে বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের দু’দেশের অংশীদারিত্বের সম্পর্কের সবক’টি ক্ষেত্র নিয়েই আজ আমি বিস্তারিত আলোচনা করেছি প্রেসিডেন্ট ম্যাগাফুলির সঙ্গে। উন্নয়নের মূল ক্ষেত্র এবং নিরাপত্তা সংক্রান্ত সাধারণ চাহিদাগুলি স্থির করার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে আমাদের মিলিত সহযোগিতা কর্মসূচি। এই আলাপ-আলোচনার মধ্য দিয়েই রূপরেখা তৈরি হয়েছে আমাদের একুশ শতকের সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্বের। · শিক্ষা ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থার প্রসার সম্ভব করে তোলেন; · অর্থনীতিকে করে তোলেন শিল্পকেন্দ্রিক; · তরুণ যুবসমাজকে গড়ে তোলেন দক্ষ কর্মী হিসেবে; · প্রাতিষ্ঠানিকভাবে ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির দিকে দৃষ্টি দেন; · দেশের সমাজ ও মানুষকে সুরক্ষিত রাখার চেষ্টা করেন; তখন মনে রাখবেন, আপনাদের এই প্রচেষ্টায় ভারত সকল সময়েই থাকবে আপনাদের এক বিশ্বস্ত বন্ধু হয়ে। সহযোগী বন্ধু রাষ্ট্র হিসেবে তানজানিয়ার সঙ্গে জ্ঞান, অভিজ্ঞতা, ক্ষমতা, দক্ষতা ও প্রযুক্তি বিনিময়ে ভারত সর্বদাই প্রস্তুত। আপনাদের প্রয়োজন ও অগ্রাধিকারের দিকে লক্ষ্য রেখেই এই কাজে এগিয়ে যাব আমরা। আমি আপনাদের সকলের কাছেই অনুরোধ জানাচ্ছি – আসুন, আমরা একযোগে প্রার্থনা করি : · প্রেসিডেন্ট জন ম্যাগাফুলির স্বাস্থ্য ও সাফল্য; · তানজানিয়া সাধারণতন্ত্রের মৈত্রীপ্রিয়, বন্ধুবৎসল নাগরিকদের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি; এবং মাননীয় প্রেসিডেন্ট জোহান স্নেইডার-আম্মান, মাননীয় প্রেসিডেন্ট, আন্তরিক ঘোষণা এবং সাদর অভ্যর্থনার জন্য আপনাকে অনেক ধন্যবাদ। ভারত ও স্যুইজারল্যান্ড – দুটি দেশই বিশ্বে শান্তি, সমঝোতা এবং মানবতাবাদের মূল্যের প্রবক্তা। গত সাত দশক ধরে আমাদের মৈত্রী সম্পর্ক উত্তরোত্তর এক নতুন উচ্চতায় আরোহণ করেছে। আজ আমি এবং প্রেসিডেন্ট আমাদের বহুধাবিস্তৃত দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের বিষয়গুলি পর্যালোচনা করেছি। স্যুইজারল্যান্ডের সিইও-দের সঙ্গেও বিস্তারিত আলাপ-আলোচনা ও মতবিনিময়ের লক্ষ্যে মিলিত হয়েছি আমরা। আমাদের দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থার মধ্যে নিহিত রয়েছে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি তথা দক্ষতা বিকাশের বিভিন্ন সহযোগিতা সূত্র। ইএফটিএ-র সঙ্গে এফটিএ প্রসঙ্গে কথাবার্তা আবার শুরু করতে ভারত যে প্রস্তুত সে কথাও আমরা ঘোষণা করেছি। স্যুইস সংস্থাগুলির শক্তির বিষয়টি আমাদের কাছে অজানা নয়। একইসঙ্গে, ভারতও কিন্তু এক বিরাট পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। বর্তমান বিশ্বে আমরা দ্রুততম গতিতে বৃদ্ধি পাওয়া এক বিশেষ অর্থনীতি। কিন্তু শুধুমাত্র তাই যথেষ্ট নয়। স্মার্ট ও নিরন্তর উন্নয়নের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠা শহর, বলিষ্ঠ কৃষিক্ষেত্র, শক্তিশালী নির্মাণ ও উৎপাদন শিল্প তথা সচল ও গতিশীল পরিষেবা সম্ভব করে তোলার মাধ্যমে ভারতীয় অর্থনীতির প্রসার ও উন্নয়নে আমি আগ্রহী। ভারতের উন্নয়নের এই চালিকাশক্তি গড়ে তুলবে বিশ্বমানের রেল, সড়ক, বিমানবন্দর এবং ডিজিটাল সংযোগের এক সুবিস্তৃত নেটওয়ার্ক। এখানে গড়ে উঠবে সকলের জন্য বাসস্থান, বাস্তবায়িত হয়ে উঠবে প্রতিটি পরিবারেই বিদ্যুৎ সংযোগের ব্যবস্থা। ভারতের ৫০ কোটিরও বেশি কর্মদক্ষ যুবশক্তি আজ বিশ্বের শ্রমশক্তির চাহিদা পূরণে সক্ষম। এর উদ্দেশ্য অনুসরণে এবং ভারতের সভ্যতা ও ঐতিহ্য অনুসারে অর্থনৈতিক দিক থেকে সমৃদ্ধ ভারত আমাদের এই গ্রহ এবং সেইসঙ্গে তার পরিবেশের সঙ্গেও মৈত্রীপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তুলতে আগ্রহী। জীবাশ্ম জ্বালানি নয়, বরং পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির ওপর আস্থা ও নির্ভরশীলতাই আমাদের মূল নীতি ও চালিকাশক্তির বিশেষ এক অঙ্গ। উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারতের চাহিদা এবং স্যুইজারল্যান্ডের শক্তি ও ক্ষমতার মধ্যে এক পূর্ণ সংযোগের সম্ভাবনা আমরা লক্ষ্য করেছি। এই কারণে ভারতের অর্থনৈতিক অগ্রগতির গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে ওঠার সুযোগ গ্রহণের জন্য আমি আমন্ত্রণ জানাই স্যুইস সংস্থাগুলিকে। এর ফলশ্রুতিতে ১২৫ কোটি নাগরিকদের এক দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির সুফল ভোগ করবে সমগ্র বিশ্ব। বর্তমান বিশ্বের বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলির সংস্কারসাধনে অঙ্গীকারবদ্ধ ভারত ও স্যুইজারল্যান্ড। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে অস্থায়ী সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির বিষয়ে আমরা একে অপরের প্রচেষ্টার সমর্থক ও সহযোগী। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর সদস্য হিসেবে ভারতের অন্তর্ভুক্তির বিষয়টি অনুভব করে তাকে সমর্থন জানানোর জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই স্যুইজারল্যান্ডের প্রেসিডেন্টকে। ‘কালো টাকা’ ও কর ফাঁকিরপ্রবণতা বন্ধ করার বিষয়টিতে দুটি দেশই বিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছে। কর ফাঁকির ঘটনায় অভিযুক্তদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করাতে প্রয়োজনীয় তথ্য বিনিময়ের কাজটি দ্রুততার সঙ্গে সেরে ফেলা প্রসঙ্গেও আমরা মতবিনিময় করেছি। তথ্যের স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে বিনিময়ে বোঝাপড়ার কাজ দ্রুত শুরু করার ওপর আমরা বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছি। আমাদের সম্পর্কের একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হল দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে শক্তিশালী সম্পর্ক গড়ে তোলা। ভারতীয় চলচ্চিত্র শিল্পের সৌজন্যে স্যুইজারল্যান্ডের প্রকৃতির অনুপম সৌন্দর্যের সঙ্গে আমরা পরিচিত। আমাদের দু’দেশের সম্পর্কের সাফল্যের ঘটনা ও কাহিনী রয়েছে প্রচুর। টেনিস জগতে বিখ্যাত স্যুইস খেলোয়াড় মার্টিনা হিঙ্গিসের সঙ্গে ভারতের সানিয়া মির্জা এবং লিয়েন্ডার পেজের অংশীদারিত্ব গ্র্যান্ড স্ল্যাম্‌স-এর এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা। আমাদের সাধারণ অঙ্গীকার ও মূল্যবোধ, দু’দেশের নাগরিকদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সংযোগ এবং ক্রমবর্ধমান অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আমাদের দু’দেশের সম্পর্ককে যে এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দেবে এ ব্যাপারে আমি আশাবাদী। জেনেভায় আমাকে আমন্ত্রণ ও আতিথেয়তার জন্য মাননীয় প্রেসিডেন্ট আরও একবার ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। দাদরাও নগর হাভেলির সিলভাসায় আজ কয়েকটি সরকারি প্রকল্পের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রকল্পগুলির মধ্যে ছিল সরকারি ভবন, সৌরবিদ্যুতের পিভিব্যবস্থা, জন-ঔষধি কেন্দ্র এবং একটি পাসপোর্ট সেবা কেন্দ্রের উদ্বোধন। উন্নয়নকর্মসূচি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক ভারতীয়রই বাসস্থানের সুযোগ থাকাপ্রয়োজন। মাত্র এক বছরেরও কম সময়ের মধ্যে ‘উজ্জ্বলা’ কর্মসূচির আওতায় এলপিজি-রসংযোগ পৌঁছে গেছে ২ কোটিরও বেশি পরিবারের কাছে। তিনিবিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষ সর্বস্বান্ত হোক এধরনের পরিস্থিতি কখনই বরদাস্ত করবে না কেন্দ্রীয় সরকার। প্রিয় ভাই ও বোনেরা, কাবেরী নদীর জল বন্টনের বিষয়কে কেন্দ্র করে যেসমস্যা, তার পরিপ্রেক্ষিতে কর্ণাটক ও তামিলনাড়ুতে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে তাঅত্যন্ত দুঃখজনক| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ভিডিও সংযোগ ব্যবস্হায় দেশের বিভিন্ন প্রান্তের সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির সুফলগ্রহীতাদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় মিলিত হলেন। এই যোজনার আওতায় বছরে মাত্র ১২ টাকার প্রিমিয়ামে ২ লক্ষ টাকা পর্যন্ত দুর্ঘটনা বিমার সুবিধা পাওয়া যায়। প্রবীণ এবং বৃদ্ধদের কল্যাণে গৃহীত বিভিন্ন সরকারি উদ্যোগের কথাও প্রসঙ্গতঃ বিবৃত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রবীণ নাগরিকদের আয়করের ক্ষেত্রে কিছু সুবিধা দেওয়ার জন্য কর ছাড়ের মাত্রা আড়াই লক্ষ টাকা থেকে বাড়িয়ে ৩ লক্ষ টাকা করা হয়েছে। প্রবীণ ও বৃদ্ধদের কল্যাণে তাঁর সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। এই পরিস্থিতিতে মুদ্রাস্ফীতি এবং পারিশ্রমিক ও বেতন বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গতিরেখে বেসরকারি ক্ষেত্রে কর্মরত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও গ্র্যাচুইটির সর্বোচ্চ মাত্রাসংশোধনের প্রয়োজন রয়েছে বলে সরকার মনে করে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিরপৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বাণিজ্যিক আদালত, বাণিজ্যিক বিভাগ এবং হাইকোর্টেরবাণিজ্যিক আপিল বিভাগ (সংশোধিত) বিল, ২০১৮ সংসদে উত্থাপনের জন্য অনুমোদন দিয়েছে| বিলে নিম্নলিখিত বিষয়গুলো অর্জনেরব্যবস্থা করা হয়েছে: *নতুন অনুচ্ছেদ ২১ (এ) যুক্ত করার ফলে কেন্দ্রীয় সরকারপি.আই.এম.-এর জন্য নিয়ম ও পদ্ধতি তৈরি করতে পারবে| এবং বিদেশথেকে বাণিজ্যিক লেনদেনের বৃদ্ধির ফলে বাণিজ্যিক বিরোধের সংখ্যা বিশেষভাবে বৃদ্ধিপেয়েছে| “মার্কিনপ্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করায় ডোনাল্ড ট্রাম্পকে অভিনন্দন। আগামীবছরগুলিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের উত্তরোত্তর সাফল্যের লক্ষ্যে তাঁর নেতৃত্বদানেরজন্য আন্তরিক শুভকামনা জানাই। আমাদের মিলিতমূল্যবোধ ও সাধারণ স্বার্থের মধ্যেই নিহিত রয়েছে ভারত-মার্কিন কৌশলগতঅংশীদারিত্বের সম্পর্ক। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “নির্বাচনে জয়ী হওয়ায় লী সিয়েন লুং এবং পিপলস অ্যাকসন পার্টি (পিএপি)-কে অভিনন্দন জানাই। সিঙ্গাপুর ও ভারতের বন্ধনকে আরও গভীরতর করে তুলতে প্রধানমন্ত্রী লি-র সাথে কাজ করার জন্য তাকিয়ে আছি ।” তিনি দূরদর্শনের অরুণপ্রভা চ্যানেল এবং গারজি-বেলোনিয়া রেললাইনের উদ্বোধন করবেন। তিনটি রাজ্যে তিনি একাধিক বিকাশমূলক প্রকল্পেরও উদ্বোধন করবেন। অরুণাচলপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী আগামীকাল সকালে গুয়াহাটি থেকে ইটানগর পৌঁছাবেন। সেখানে আইজি পার্কে একাধিক বিকাশমূলক প্রকল্পের উন্মোচন করবেন প্রধানমন্ত্রী। হলোঙ্গিতে গ্রীনফিল্ড বিমানবন্দর নির্মাণের শিলান্যাস করবেন শ্রী মোদী। বর্তমানে ইটানগরের নিকটবর্তী বিমানবন্দরটি ৮০ কিলোমিটার দূরে অসমের লীলাবাড়িতে অবস্হিত। হলোঙ্গিতে এই বিমানবন্দর গড়ে উঠলে দূরত্ব এক-চতুর্থাংশ কমে যাবে। এই অঞ্চলে উন্নত যোগাযোগ ব্যবস্হা গড়ে তুলতে, বিমানবন্দরটি অরুণাচলপ্রদেশে পর্যটন বিকাশের সম্ভাবনাও বাড়িয়ে তুলবে। এই বিমানবন্দর ঐ অঞ্চলের অর্থনৈতিক বিকাশ ত্বরান্বিত এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং সারা দেশের জন্য কৌশলগতভাবেও খুবই গুরুত্বপূর্ণ হবে। বিমানবন্দরে একাধিক স্হায়ী ব্যবস্হা থাকবে, যেমন- শব্দদূষণ রোধ করতে বিমানবন্দরের দিকের রাস্তাটির দু ধারে সবুজ বেল্ট, বৃষ্টির জলে সেচ ব্যবস্হা, শক্তি সাশ্রয়ী যন্ত্রপাতির ব্যবহার ইত্যাদি। অরুণাচলপ্রদেশে প্রধানমন্ত্রী সেলা সুরঙ্গপথের শিলান্যাস করবেন। এটি সারা বছর ধরে তাওয়াং উপত্যকায় সবরকম আবহাওয়ায় সাধারণ মানুষ ও নিরাপত্তা বাহিনীর জন্য যোগাযোগের ব্যবস্হা করে দেবে। এই সুরঙ্গপথ ব্যবহারে তাওয়াং যাত্রার সময় ১ ঘন্টা কমবে এবং ঐ অঞ্চলের পর্যটন ও অন্যান্য অর্থনৈতিক কর্মকান্ডের বিকাশ সম্ভব হবে। ইটানগের আইজি পার্কে প্রধানমন্ত্রী অরুণাচলপ্রদেশের জন্য দূরদর্শনে একটি নতুন চ্যানেল- ডিডি অরুণপ্রভার সূচনা করবেন। এটি দূরদর্শনের ২৪তম চ্যানেল হবে। এছাড়া অরুণাচলপ্রদেশে ১১০ মেগাওয়াটের পারে জল বিদ্যুৎ প্রকল্পটিকে প্রধানমন্ত্রী জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। অরুণাচলপ্রদেশের জোটে-তে ফিল্ম অ্যান্ড টেলিভিশন ইন্সিটিটিউট অফ ইন্ডিয়ার স্হায়ী ক্যাম্পাসের শিলান্যাস করবেন প্রধানমন্ত্রী। চলচ্চিত্রের ছাত্রছাত্রীরা, বিশেষ করে উত্তরপূর্বের রাজ্যগুলির ছাত্রছাত্রীরা এরফলে উপকৃত হবেন। অরুণাচলপ্রদেশে আধুনিকীকরণপ্রাপ্ত তেজু বিমানবন্দরের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। বিমানবন্দরটিতে উড়ান প্রকল্পের আওতায় বাণিজ্যিক বিমান চলাচলের জন্য উপযোগী নতুন টার্মিনাল নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী অরুণাচলপ্রদেশে ৫০টি স্বাস্হ্য ও সুস্বাস্হ্য কেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন। আয়ুষ্মান ভারত যোজনায় সকলকে স্বাস্হ্য সেবার আওতায় আনতে স্বাস্হ্য ও সুস্বাস্হ্য কেন্দ্রগুলি খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। অরুণাচলপ্রদেশে সৌভাগ্য যোজনার আওতায় ১০০ শতাংশ বাড়িতে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে বলেও প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করবেন। অসমে প্রধানমন্ত্রী ইটানগর থেকে প্রধানমন্ত্রী গুয়াহাটি ফিরে আসবেন। সমগ্র উত্তরপূর্ব ভারতে সস্তায় উন্নতমানের গ্যাস পৌঁছে দেওয়ার সরকারি পরিকল্পনার অঙ্গ হল এই গ্যাস গ্রীড। কামরূপ, কাচের, হাইলাকান্ডি ও করিমগঞ্জ জেলায় সিটি গ্যাস ডিসট্রিবিউশন নেটওয়ার্কের ভিত্তিপ্রস্তর স্হাপন করবেন প্রধানমন্ত্রী। ঐ অঞ্চলের গৃহস্হালি, শিল্প ও বাণিজ্যিক ইউনিটগুলিকে পরিশ্রুত গ্যাস সরবরাহ করার দায়িত্ব থাকবে সিটি গ্যাস ডিসট্রিবিউশনর হাতে। অসমের তিনসুকিয়াতে হলং মডিউলার গ্যাস প্রক্রিয়াকরণ কারখানার উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী। এই ব্যবস্হা একবার চালু হলে, অসমে উৎপাদিত মোট গ্যাসের ১৫ শতাংশ পৌঁছে দেবে। উত্তর গুয়াহাটিতে এলপিজি-র ভাসমান মজুত ভান্ডারের ক্ষমতা সম্প্রসারণ প্রকল্পেরও সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রীর এই সফরসূচির শেষ গন্তব্যস্হল হল আগরতলা। সেখানে তিনি স্বামী বিবেকানন্দ ক্রীড়াঙ্গনের ফলক উন্মোচনের মাধ্যমে গারজি-বেলোনিয়া রেললাইনটিকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এই রেললাইনটি ত্রিপুরাকে দক্ষিণ ও দক্ষিণপূর্ব এশিয়ার প্রবেশদ্বার হিসেবে প্রতিষ্ঠা করবে। প্রধানমন্ত্রী নরসিংগড়ে ত্রিপুরা ইন্সিটিটিউট অফ টেকনোলজির নতুন ভবনের উদ্বোধন করবেন। আগরতলায় মহারাজা বীরবিক্রম বিমানবন্দরে প্রধানমন্ত্রী মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরের প্রতিমূর্তির আবরণ উন্মোচন করবেন। মহারাজা বীরবিক্রম কিশোর মানিক্য বাহাদুরকে অনেকেই আধুনিক ত্রিপুরার স্রষ্টা হিসেবে সম্মান করা হয়। আগরতলা শহরের পরিকল্পনার কাজের জন্য তাঁকে স্বীকৃতি দেওয়া হয়। দেশে আরও তিনটি নতুন এইমস্‌ স্থাপনের প্রস্তাব মঞ্জুর করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। দু’দিনের সফরে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী চীনের উদ্দেশে রওনা দিয়েছেন। এই সফরের প্রাক্কালেনতুন দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, ২৭ ও ২৮ এপ্রিল চীনের উহানে তিনি সেদেশের রাষ্ট্রপতি শ্রী জি জিংপিং-এর সঙ্গে ঘরোয়া বৈঠকে মিলিত হবেন। দ্বিপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে তাঁদের মধ্যে আলোচনা হবে। জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক প্রেক্ষাপটে, নিজের নিজের দেশের উন্নয়নের দিকে লক্ষ্য রেখেই শ্রী মোদী ও শ্রী জিংপিং-এর মধ্যে নানা বিষয়ে আলোচনা হবে। আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের সবাইকে নমস্কার! ২৬-শে জানুয়ারি আমাদের গণতন্ত্র দিবস দেশের প্রতিটি কোণে উৎসাহ আর উদ্দীপনারসঙ্গে পালন করেছেন সবাই। আমি আশা করি প্রত্যেকস্তরে, প্রতি মুহূর্তে, যতটা জোর অধিকারের উপর দেওয়া হয়, ততটাই জোর কর্তব্যের উপরদেওয়া হোক। অধিকার আর কর্তব্যের দুই পথের উপরই ভারতের লোকতন্ত্রের গাড়ি অগ্রসর হতেপারে। কাল ৩০-শে জানুয়ারি, আমাদের পূজনীয় বাপুর পুণ্য তিথি। ৩০-শেজানুয়ারি আমরা সকাল ১১-টায়, ২ মিনিটের মৌনতা পালন করে, দেশের জন্য প্রাণদানকারীশহীদদের উদ্দেশে শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করি। ঐক্যবদ্ধ সমাজ হিসেবে, একটা দেশ হিসেবে,৩০-শে জানুয়ারি, ১১-টায় দুই মিনিটের শ্রদ্ধাঞ্জলি পালন – এ আমাদের সাধারণ অভ্যাস হয়ে ওঠা উচিত। দুই মিনিটই হোক না কেন,কিন্তু তার মধ্যে সামগ্রিকতা আছে, সঙ্কল্প আছে এবং শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধাওঅভিব্যক্ত হয়। আমাদের দেশের সৈন্যদের প্রতি, নিরাপত্তা বাহিনীর প্রতি, একসহজ সমাদর ব্যক্ত হয়। এবারের গণতন্ত্র দিবসের প্রাক্‌-সন্ধ্যায়, বিভিন্ন বীরত্বসূচকপুরস্কারে যেসব বীর জওয়ান সম্মানিত হয়েছেন, তাঁদের এবং তাঁদের পরিবারের সদস্যদেরআমি অভিনন্দন জানাই। এই সব পুরস্কারের মধ্যে ‘কীর্তিচক্র ’, ‘শৌর্য চক্র ’ , ‘পরম বিশিষ্ট সেবা পদক ’, ‘বিশিষ্ট সেবা পদক ’ – অনেকবিভাগ আছে। আমি বিশেষ করে নবযুবকদের কাছে আবেদন জানাতে চাই – আপনারা যাঁরা সোশ্যালমিডিয়ায় খুব সক্রিয়, আপনারা কি একটা কাজ করতে পারেন? এইবার যে যে বীর এই সম্মানেভূষিত হয়েছেন – ইন্টারনেটে খোঁজ করে তাঁদের সম্পর্কেপ্রশস্তি লিখুন আর নিজের বন্ধুদের কাছে সেসব পৌঁছে দিন। যখন তাঁদের সাহস, বীরত্ব ওপরাক্রমের কথা বিস্তারিত ভাবে আমরা জানতে পারি, তখন যেমন আশ্চর্য হয়ে যাই, তেমনিগর্বও হয় এবং প্রেরণাও পাই। এক দিকে আমরা সবাই ২৬-শে জানুয়ারির উৎসাহ আর উদ্দীপনার খবরেযখন আনন্দে ছিলাম, ঠিক সেই সময় কাশ্মীরে আমাদের সেনা জওয়ানরা, যাঁরা দেশেরসুরক্ষায় স্থিরপ্রতিজ্ঞ, তুষার ধ্বসের ফলে তাঁদের বীর-প্রয়াণ ঘটে। আমি এই সব বীরজওয়ানদের প্রতি সম্মান এবং শ্রদ্ধা নিবেদন করি, প্রণাম জানাই। আমার যুবা বন্ধুরা, আপনারা তো ভালো করেই জানেন যে, আমিধারাবাহিকভাবে ‘মন কী বাত ’শোনাচ্ছি। জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চ, এপ্রিল – এই সব মাসপ্রত্যেক পরিবারে পরীক্ষার মাস। পরিবার দুশ্চিন্তায়, বিদ্যার্থী দুশ্চিন্তায়, শিক্ষক দুশ্চিন্তায় – একটা বেশবিচিত্র মনোবৈজ্ঞানিক বাতাবরণ প্রত্যেক সংসারে দেখা যায়। আর আমার সবসময় মনে হয়েছেযে এর থেকে বেরিয়ে আসা উচিত আর এই জন্যই আজ আমি তরুণ বন্ধুদের সঙ্গে এ সম্পর্কেবিস্তারিত ভাবে কথা বলতে চাই। টেলিফোনে আমি এক বার্তা পেয়েছি সৃষ্টিরকাছ থেকে। আপনারাও শুনুন সৃষ্টি কী বলছেন – ‘স্যার আমি আপনাকে শুধু এইটুকু বলতে চাই যে পরীক্ষার সময়েপ্রায়শই এমন হয় যে আমাদের বাড়িতে, পাড়া-প্রতিবেশে, আমাদের সোসাইটিতে এক ভয়ের আরআতঙ্কের পরিবেশ সৃষ্টি হয়। এর ফলে ছাত্ররা অনুপ্রেরণা তো পায়ই না বরং খুব ম্রিয়মাণহয়ে পড়ে। তো আমি আপনার কাছে জানতে চাই যে এই পরিবেশ কি খুশির হতে পারে না? ’ যাই হোক, প্রশ্ন তো সৃষ্টি করেছে, কিন্তু এই একই প্রশ্নআপনাদের সবার মনেও নিশ্চয়ই আছে। পরীক্ষা এমনিতেই এক আনন্দের অবকাশ হওয়া উচিত। সারাবছর পরিশ্রম করা হয়েছে, এবার জানানোর সুযোগ এসেছে, এটা আশা এবং উৎসাহের পর্ব হওয়াউচিত। আর যখন উৎসব হয় তখন আমাদের ভেতর সেরা যেটাসেটাই বেরিয়ে আসে। উৎসবের সময়ই সমাজ নিজের শক্তির আন্দাজ পায়। সবথেকে ভালো যেটাসেটাই প্রকাশিত হয়। আপনারা দেখবেন এই চাপ খুশিতে পরিবর্তিত হবে। উৎসবপূর্ণ বাতাবরণ আপনাকেভারমুক্ত করবে। আর এখানে আমি মা-বাবাদের প্রতি বেশি আবেদন রাখব যে আপনারা তিন-চারমাস এক উৎসবের বাতাবরণ তৈরি করে রাখুন। গোটা পরিবার একটা টিমের মত এই উৎসবকে সফলকরতে নিজের-নিজের ভূমিকা উৎসাহের সঙ্গে পালন করুন। দেখুন, কত তাড়াতাড়ি পরিবর্তনআসে। সত্যি তো এটাই যে কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারিকা, কচ্ছ থেকে কামরূপ, অম্রেলীথেকে অরুণাচল এই তিন-চার মাস কেবল পরীক্ষা আর পরীক্ষা। আমাদের প্রত্যেকের দায়িত্বযে প্রত্যেক বছর এই তিন-চার মাস, নিজের-নিজের পদ্ধতিতে, নিজের-নিজের পরম্পরা মেনে,নিজের-নিজের পরিবারের বাতাবরণ বুঝে, একে এক উৎসবে পরিণত করা। আর তাই তো আমিআপনাদের বলব ‘ smilemore score more ’. যত বেশি আনন্দে এইসময়টা কাটাবে, তত বেশি নম্বর পাবে। এই জন্যই বলা হয়, memory recall করার সবচেয়ে মোক্ষম দাওয়াই হল relaxation যা আমি আমারনিজস্ব অভিজ্ঞতা থেকে বলছি। যখন আমরা Pressure -এ থাকি, তখন আমরা অনেক জিনিস ভুলে যাই কিন্তু যখন relax করি, তখন আমাদের বহু দামী ও কাজের কথা মনে পরে যায়। এর মানে এই নয় যে তোমার কাছে জ্ঞান নেই বা তথ্য নেই বা তুমি চেষ্টা করছ না। এই জন্যই বলা হয়, ‘ A happy mind is the secret for a good mark sheet ’, অর্থাৎ পরীক্ষায় ভাল ফল করার মূল মন্ত্র হল ধীর-স্থির, relaxed থাকা। কখনও কখনওএরকমও মনে হয় আমরা পরীক্ষাকে সঠিক আঙ্গিকে দেখে উঠতে পারছি না। তখন মনে হয়,পরীক্ষা যেন জীবন-মরণের প্রশ্ন। পরীক্ষার অর্থ হল তুমি সারা বছর ধরে যে পড়াশোনাকরেছ তার মূল্যায়ন। এটা জীবন-মরণ পণ নয়। তোমার জীবন কেমন ছিল, বর্তমানে কেমন আছ,ভবিষ্যতই বা কেমন হবে এটা তার পরীক্ষা নয়। শুধুমাত্র ক্লাসরুমের পাঠ্যবইয়েরপরীক্ষার মধ্যেই তোমরা আবদ্ধ থাকবে না, তোমাদের জীবনে আরও অনেক কঠিন কঠিন পরীক্ষারসম্মুখীন হতে হবে। তাই স্কুলের পরীক্ষার উপর জীবনের সাফল্য বা ব্যর্থতা নির্ভর করে– এই ভাবনা থেকে তোমরা মুক্ত হও। মনে কর এই ব্যর্থতার পর তিনি যদি হতাশ হয়ে যেতেন, হতোদ্যমহয়ে যেতেন, তাহলে কি ভারত এত বড় একজন বৈজ্ঞানিককে পেত – এমন একজন রাষ্ট্রপতিকেপেত! পরীক্ষারনম্বরই সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যার ফলে ছাত্র-ছাত্রীদের মধ্যে শুধুমাত্রপ্রতিযোগিতাই বাড়েনি, দুশ্চিন্তাও বেড়েছে। শিক্ষাব্যবস্থার বর্তমান স্থিতি ওভবিষ্যত সম্পর্কে আপনার মতামত জানতে চাই।” যদিও রিচা নিজের প্রশ্নের উত্তর নিজেই দিয়েছেন, কিন্তু তাঁরসঙ্গে আমার মতামতও জানতে চেয়েছেন। সঠিকভাবে বাঁচার মানে হল জীবনের উদ্দেশ্য ওজীবনের লক্ষ্যের মধ্যে সামঞ্জস্য গড়ে তোলা। আপনি কি তা করতে পেরেছেন? যখনই আপনি এইসামঞ্জস্য গড়তে সক্ষম হবেন, তখন আপনাকে আর পরীক্ষার নম্বরের পেছনে দৌড়াতে হবে না –বরং সে নিজে থেকেই আপনার আয়ত্তে আসবে। বড় বড়মামলা মোকদ্দমার সময় আপনারা যখন কোনও নামী উকিলের কাছে যান, তখন কি তাঁরমার্কশিট-এর খোঁজ করেন? আপনি তাঁর অভিজ্ঞতা, তাঁর জ্ঞান এবং সাফল্যকেই দেখেন। এইজন্যই কখনও কখনও এই নম্বরের বোঝা আমাদের সঠিক পথে যাওয়ার অন্তরায় হয়ে ওঠে। আত্মবিশ্লেষণ করলে দেখবেন যে যখন শুধুমাত্র নম্বরের জন্য দৌড়েছেন তখন সহজতমপথ খুঁজেছেন এবং নির্দিষ্ট কিছু জিনিসের উপরই মনোযোগ দিয়েছেন। কিন্তু এই গণ্ডিরবাইরে কোনো সমস্যার সম্মুখীন হতে গেলেই আপনি অপ্রস্তুত হয়ে পড়ছেন। যখন জ্ঞান অর্জনকেলক্ষ্য করেছেন তখন সমস্ত বিষয়কে সহজেই আত্মস্থ করতে পেরেছেন। কিন্তু যে মুহূর্তেনম্বর পাওয়াকে প্রধান উদ্দেশ্য করেছেন তখন আপনার জ্ঞানের পরিধি সংকুচিত হয়ে উঠেছেএবং আপনি নিজেকে একটি গণ্ডির মধ্যে সীমাবদ্ধ করে ফেলেছেন। আর এই জন্যই কখনও কখনওএরকমও হয় পরীক্ষায় অত্যন্ত সাফল্যের সঙ্গে কৃতকার্য হয়েও আমরা জীবনে ব্যর্থতারমুখোমুখি হই। রিচা আরও একটি বিষয় উত্থাপন করেছেন, তা হল প্রতিযোগিতা। এটাএকটা খুব বড় মানসিক দ্বন্দ্বের ক্ষেত্র। বন্ধুরা, জীবনের প্রত্যেকটি ক্ষেত্রে এবং বিশেষ করে যখনআপনারা পরীক্ষা দিতে যাচ্ছেন, তখন খেয়াল করে দেখুন, আগে যদি পড়াশোনার জন্য দুইঘণ্টা সময় দিতেন, এখন কি সেটা তিন ঘণ্টা করতে পেরেছেন? আগে সকালে যখন ওঠার কথাভাবতেন, তবুও দেরি হত, এখন কি ঠিক সময়ে উঠতে পারছেন? যখন এভাবেনিজেকে ছাপিয়ে যাই, স্বতঃপ্রণোদিতভাবে আরও এগিয়ে যাওয়ার উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা পাই।কোনো বাহ্যিক প্রেরণার প্রয়োজন পড়ে না। প্রথমত আপনি অপরজনের থেকে শ্রেষ্ঠ,দ্বিতীয়ত আপনি অপর জনের থেকে নিকৃষ্ট এবং তৃতীয়ত আপনারা দুজনেই একই ক্ষমতাসম্পন্ন।আপনি যদি শ্রেষ্ঠতর হন, তাহলে আপনি তাকে পরোয়া করবেন না, অধিক আত্মবিশ্বাসী হয়ে পড়বেন।যদি আপনি অপর জনের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় খারাপ ফল করেন, তাহলে অসুখী হবেন,ঈর্ষান্বিত হবেন। সেই কারণে আমি আপনাদের নিজের সঙ্গেই প্রতিযোগিতারঅনুরোধ করবো। আগে কী করেছি, এরপর কী করব এবং এর থেকে ভালো কীভাবে করব সেটা চিন্তাকরতে হবে। তাহলেই আপনি অনেক পরিবর্তন অনুভব করবেন। অভিভাবকদের ভূমিকা সম্বন্ধে শ্রী এস. সুন্দর নিজের চিন্তাব্যক্ত করেছেন। তাঁর মতে পরীক্ষাতে অভিভাবকদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা আছে। উনিআরো লিখেছেন – “আমার মা বিশেষ লেখা-পড়া জানতেন না, কিন্তু তা সত্ত্বেও উনি আমারপাশে বসে থাকতেন। আমাকে অঙ্ক করতে বলতেন। অঙ্ক করা হলে উনি উত্তর মিলিয়ে দেখতেন।এই ভাবে উনি আমাকে সাহায্য করতেন। আমার মা দশম শ্রেণির পরীক্ষাপাশ করতে পারেন নি কিন্তু ওঁর সাহায্য না পেলে CBSE -র পরীক্ষা পাশ করা আমার পক্ষে সম্ভবহত না। সুন্দর-জী, আপনি সঠিক বলেছেন। আপনি নিশ্চয় লক্ষ্য করেছেন যেআমাকে যাঁরা প্রশ্ন করেন, উপদেশ দেন, তাঁদের মধ্যে মহিলাদের সংখ্যাই বেশি। এটা স্বীকার করে নিলে এই সমস্যার থেকে সমাধানের পথখুলে যায়। আশা রাস্তাকে কঠিনতর করে তোলে। বর্তমান অবস্থাকে স্বীকার করে নিলেসমাধানের নূতন রাস্তা খোলার সুযোগ সৃষ্টি হয়। অনেক বছর আগের কথা, হার্ট অ্যাটাক হওয়ার কারণে আমাদের একজনপরিচিত ব্যক্তি হাসপাতালে ছিলেন। তিনি ওখানে বসেওখানকার অবস্থাটা দেখে নিলেন, অসুখ সম্পর্কে কোন কথা না বলে নানারকম চুটকি শোনাতেশুরু করলেন আর দু-চার মিনিটের মধ্যেই সেখানকার পরিবেশকে উৎফুল্ল করে তুললেন। আপনি কি কখনও ভেবেছেন যে পরীক্ষার দিনগুলিতে বাচ্চাদের হাসি-খুশির একটাপরিবেশ দিই। আপনি দেখবেন পরিস্থিতিটাই বদলে যাবে। আমার কাছে বেশ মজার একটা ফোন এসেছে। ভদ্রলোক নিজের নাম বলতেচাননি। ফোনটার বিবরণ শুনলে আপনারা বুঝতে পারবেন, ওই ব্যক্তি কেন নিজের নাম প্রকাশকরতে চাইছেন না। “নমস্কার, প্রধানমন্ত্রীজী, আমিআমার শৈশবে এমন কিছু কাজ করেছিলাম যে আমি আমার নাম বলতে পারছি না। ওই সময়টা আমি পড়াশোনার জন্যব্যয় করলে একই নম্বর পেতে পারতাম। আমি যখন নকল করে পাশ করার চেষ্টা করেছিলাম, তখনধরা পড়ে যাই আর আমার জন্য আমার আশেপাশের অনেক বন্ধুদেরও বেশ অসুবিধা হয়েছিল।” আপনি ঠিক বলেছেন। কাজকে short cut করার এই যে রাস্তা, সেটাই নকল করারকারণ হয়ে যায়। কখনো কখনো নিজের উপর আস্থা না থাকলে মনে হয় পাশের জনের থেকে একটুদেখে নিই। Confirm করে নিই, আমি যা লিখেছি, সেটা সঠিক কিনা। কখনো কখনো তোএমনও হয় যে আমি ঠিক লিখেছি, কিন্তু পাশের জন ভুল লিখেছে, নিজেরটার পরিবর্তে সেইভুলটাকে ঠিক ভেবে নিয়ে মারা পড়েছি। তাই নকলে কোনও লাভ নেই। আমি আপনাদের সেই কথাটাই আবার বলছি। আর নকল করা একবার নিয়মিত অভ্যাসে পরিণতহলে জীবনে কিছু শেখার ইচ্ছাও হবে না। তাহলে আপনি কোথায় পৌঁছাবেন? মনে করুন, আপনিনিজেই নিজের রাস্তা গর্ত খুঁড়ছেন, অর্থাৎ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছেন। আমি এমনওদেখেছি যে কিছু মানুষ নকল করার উপায় খুঁজতেই নিজের সমস্ত প্রতিভা কাজে লাগাচ্ছেএবং সৃজনশক্তিকে ব্যবহার করছে। যদি এই প্রতিভা, সময় এবং সৃজনীশক্তিকে আপনিপড়াশোনার জন্য ব্যয় করতেন, তাহলে নকল করার কোনো প্রয়োজন হত না। আপনার পরিশ্রমলব্ধ সাফল্যেযে আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পাবে, তা অতুলনীয়। একটা ফোন পেয়েছিলাম – “নমস্কার, প্রধানমন্ত্রীজী! পরীক্ষার সময় আমি যদি খেলার কথাই বলি, তখন সবাই বলবে – একেমন প্রধানমন্ত্রী! পরীক্ষার সময় বাচ্চাদের খেলতে বলছেন! কারণ সাধারণ মানুষেরধারণা যে পড়ুয়ারা খেলাধূলায় মন দিলে তারা পড়াশোনাতে অমনোযোগী হয়ে পড়বে। এই ধারণারমূলেই ভুল রয়েছে। যতো সমস্যার শিকড় ওখানেই। অনেকেই এমন বলেন – সব পরীক্ষা পাশ করে নিই, তারপরখেলা যাবে, পরে বাকী সব করা যাবে – এটা অবাস্তব ভাবনা। পর্যাপ্তবিশ্রাম, শরীরের প্রয়োজন মতো ঘুম এবং একই সঙ্গে মস্তিষ্কের সঠিক কার্যকলাপের জন্যশরীরের এক জরুরি ভূমিকা রয়েছে – এটাও মনে রাখতে হবে। মস্তিষ্ক ছাড়াও বাকি শরীরেরসঠিক সক্রিয়তা থাকা উচিত। কখনও কি একবারও ভেবে দেখেছেন ঘর থেকে বেরিয়ে একটু আকাশেরদিকে তাকাই, খানিক গাছপালা প্রকৃতির দিকে চোখ মেলে দেখি, তাতে মাথা অনেক হাল্কাহয়ে যাবে, আপনারা দেখবেন পড়ার ঘরে ফিরে অনেক তাজা মনে আবার পড়তে বসতে পারবেন। আপনিযাই বলুন না কেন, পড়ার ফাঁকে মাঝে মাঝে উঠে পরে পড়ার ঘর থেকে বেরিয়ে আসুন। একটুরান্নাঘরে গেলেন, পছন্দের খাবার কিছু থাকলে এদিক ওদিক খুঁজুন, যে বিস্কুটভালোবাসেন যদি পেয়ে যান খেয়ে নিন, একটু মজা করুন, হাসি-ঠাট্টা করুন। সব্বার এই মত পছন্দ হবে কিনা জানি না, কিন্তু আমি আমার বিশ্বাসের কথাজানালাম। এই সময় ডিপ ব্রেদিং করলে খুব উপকার হয়। তিনি বললেন, আরে না-না, আপনি বলুনই না, এই যেবক্তৃতা দিতে দিতে আপনার গলা বসে যায় তার সঙ্গে এর সম্পর্ক রয়েছে। আপনি ঠিকঠাকঘুমোলে আপনার ভোকাল কর্ডও বিশ্রাম পাবে। এর আগে আমি আমার ঘুম ও গলার স্বর নিয়েকক্ষনো ভাবিনি। তিনিই আমাকে একটা সহজ টোটকা দিয়ে দিলেন। মন, বুদ্ধি, দেহ সচল রাখতে খেলাধূলারও মস্ত ভূমিকা রয়েছে। তরুণ বন্ধুরা, আপনারা ভাবছেনআমরা পরীক্ষার পড়ায় ব্যস্ত আর আমি ‘মন কি বাত’ ভাষণেও আপনাদের নিয়ে পড়লাম! এমন তোহতে পারে, আমার আজকের কথা আপনাদের relaxation -এর কাজ করে দিল। কিন্তু এটাও আমি এর সঙ্গে বলবো, আমি যা সববলছি, সেটা নিয়ে ভেবে মন ভারাক্রান্ত করবেন না। যদি পারেন তো মেনে চলবেন, না পারলেকরবেন না। আমি যেন আপনাদের কোনও চিন্তার কারণ না হয়ে পড়ি। যেমন আমি আপনাদেরমা-বাবা-অভিভাবকদের দুশ্চিন্তা থেকে মুক্তি দিতে চাই একই ভাবে আমিওদুশ্চিন্তামুক্ত থাকতে চাই। এই মন্ত্র নিয়ে এগিয়ে চলুন। প্রিয় দেশবাসী, এবছরের ১-লাফেব্রুয়ারি ভারতীয় কোস্ট গার্ড বাহিনীর চল্লিশ বছর পূর্তি হচ্ছে। এই উপলক্ষে কোস্টগার্ড বাহিনীর প্রত্যেক কর্মী ও সেনাদের তাঁদের দেশের প্রতি কর্তব্য পালনের জন্যঅভিনন্দন ও ধন্যবাদ জানাচ্ছি। কোস্ট গার্ড-এ আমাদের মহিলা পাইলট অফিসার রয়েছেন, এমনকি হোভারক্র্যাফ্‌ট-এরকামান সামলাতেও তাঁরা পারদর্শী। বিদ্যার অর্চনার জন্য, আরাধনার জন্য পালন করাহয়। শুধুই বিদ্যার্চনা নয়, বীরত্বের অনুপ্রেরণার উৎসবও বটে। ‘মেরে রঙ দে বাসন্তীচোলা’ – এটাই তো সেই অনুপ্রেরণা। এই বসন্ত-পঞ্চমী উদ্‌যাপনের পরিসরে দেশবাসীকেআমার আন্তরিক শুভেচ্ছা জানাই। আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘মন কি বাত’কার্যক্রমকে আকাশবাণী আরও অনেক বর্ণময় ভাবনাচিন্তায় ভরিয়ে তুলেছে। গত মাসে আমার‘মন কি বাত’ ভাষণের অব্যবহিত পরে আঞ্চলিক ভাষায় ‘মন কি বাত’ শোনানো শুরু করেছে। এইপ্রচেষ্টায় বৃহৎ সাফল্য এসেছে। এই নিয়ে দূর-দূরান্ত থেকে দেশবাসীরা চিঠি লিখেছেন।আকাশবাণীর এই স্বতঃপ্রণোদিত প্রচেষ্টার জন্য আমি তাদের অনেক অনেক অভিনন্দনজানাচ্ছি। দেশবাসী, আবার আপনাদেরকে আমার অনেক অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি। ‘মন কিবাত’-এর সাহায্যে আপনাদের সঙ্গে আমার যোগাযোগের সেতু তৈরি হয়েছে। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন চিনের কেন্দ্রীয় সেনা কমিশনের ভাইস চেয়ারম্যান জেনারেল ফ্যান চ্যাংলং। ভারত ও চিনের সেনাবাহিনীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে উত্তরোত্তর উন্নয়নের বিষয়টি সম্পর্কে তিনি আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে। দু’দেশের মধ্যে কৌশলগত আস্থার মনোভাব গড়ে তুলতে এবং সীমান্ত এলাকায় শান্তি ও স্থিতাবস্থা বজায় রাখতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সামগ্রিক উন্নয়নের বিষয়টি খুবই জরুরি বলে মন্তব্য করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারত ও চিনের মধ্যে সেনাবাহিনী পর্যায়ে সহযোগিতার প্রসারে গৃহীত পদক্ষেপগুলিকে স্বাগত জানান প্রধানমন্ত্রী। “প্রত্যেককে শুভ মকর সংক্রান্তির শুভেচ্ছা পোঙ্গল উপলক্ষ্যে সকলকে শুভেচ্ছা মাঘ বিহু উপলক্ষ্যে অভিনন্দন ইন্ডিয়া পোস্ট পেমেন্টস্‌ ব্যাঙ্ক (আই পি পি বি)স্থাপনের প্রস্তাবে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। আই পি পি বি স্থাপনের প্রকল্পটি সম্পূর্ণ করতে ব্যয় হবে ৮০০ কোটি টাকার মতো। এই প্রকল্প রূপায়ণের ফলে লাভবান হবেন দেশের সমস্ত নাগরিক; দেশের যে ৪০ শতাংশ মানুষ এখনও প্রথাগত ব্যাঙ্ক পরিষেবার আওতার বাইরে থেকে গেছেন, তাঁরা বিশেষভাবে এর সুফল ভোগ করবেন। আগামী বছরের মার্চের মধ্যে ব্যাঙ্ক স্থাপনের প্রয়োজনীয় ছাড়পত্র দেওয়া হবে শীর্ষ ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে। “নেতাজি সুভাষচন্দ্র বোস-এর জন্মবার্ষিকীতে আমি তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। ঔপনিবেশিকতার হাত থেকেদেশকে মুক্ত করার ক্ষেত্রে তাঁর বীরত্ব ও সাহসিকতা এক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছিল। ২০১৯ থেকে ২০২৩ পর্যন্ত রাশিয়ার বিদেশ মন্ত্রক এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের মধ্যে আলাপ-আলোচনার জন্য প্রোটোকল রাশিয়ার আর্থিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রক এবং ভারতের নীতি আয়োগের মধ্যে সমঝোতাপত্র আর্থিক উন্নয়ন বিষয়ক মন্ত্রী ম্যাক্সিম ওরেশকিন মনুষ্যবাহিত মহাকাশ যান কর্মসূচির ক্ষেত্রে যৌথ কর্মপরিকল্পনা গ্রহণের জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থা (ইসরো) এবং রাশিয়ার মহাকাশ এজেন্সি ‘রসকসমস’-এর মধ্যে সমঝোতাপত্র রসকসমস-এর নির্দেশক দিমিত্রি রোগোজিন বিদেশ সচিব বিজয় গোখলে রেল ক্ষেত্রে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র রাশিয়া রেলের সিইও তথা চেয়ারম্যান ওলেগ বেলোজেরভ পারমানবিক ক্ষেত্রে সহযোগিতামূলক বিষয়গুলির রূপায়ণ ও অগ্রাধিকারের জন্য কর্মপরিকল্পনা গ্রহণ রস্যাটম সংস্থার ডিজি অ্যালেক্সি লিখাচেভ আনবিক বিষয়ক দপ্তরের সচিব কে এন ব্যাস পরিবহণ সংক্রান্ত শিক্ষাক্ষেত্রে উন্নয়নমূলক সহযোগিতার জন্য রাশিয়ার পরিবহণ এবং ভারতীয় রেলের মধ্যে সমঝোতাপত্র ভারতে নিযুক্ত রাশিয়ার রাষ্ট্রদূত নিকোলে কুদাশেভ রাশিয়ায় নিযুক্ত ভারতের রাষ্ট্রদূত ডি বি ভেঙ্কটেশ ভার্মা অতিক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে ভারতের জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প নিগম (এনএসআইসি)এবং রাশিয়ার ক্ষুদ্র ও মাঝারি বাণিজ্যিক নিগমের (আরএসএমবি) মধ্যে সমঝোতাপত্র সে দেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি বাণিজ্যিক নিগমের মহানির্দেশক আলেক্সান্ডার ব্রেভারম্যান ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে সার ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষ্যে রাশিয়ান ডায়রেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ড (আরডিআইএফ); পিজেএসসি ফসঅ্যাগ্রো (ফসঅ্যাগ্রো) এবং ভারতীয় পটাশ লিমিটেডের মধ্যে চুক্তি রাশিয়ান ডায়রেক্ট ইনভেস্টমেন্ট ফান্ডের মহানির্দেশক কিরিল দিমিত্রেভ এবং ফসঅ্যাগ্রোর সিইও অ্যান্ড্রে গুরেভ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল, অর্থাৎ ২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬ তারিখে কেরল ও তামিলনাড়ু সফরে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপানি সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি। ২ লক্ষ বর্গ মিটার এলাকা জুড়ে এই প্রদর্শনীর আয়োজন করা হয়েছে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন রাজ্যকে বিনিয়োগের অন্যতম গন্তব্য হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী ২০০৩ সালে ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’ শীর্ষ সম্মেলনের সূচনা করেছিলেন। এই শীর্ষ সম্মেলন বিশ্ব জুড়ে আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন, জ্ঞানের আদান-প্রদান এবং কার্যকর অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার মতো বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চ প্রদান করবে। বৈঠকে বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও নীতি-প্রণেতারা সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলিতে ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনা প্রণয়নের ব্যাপারে আলাপ-আলোচনা করবেন। সম্মেলনে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও গণিত নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের আলোচনাসভা আয়োজন করা হচ্ছে। এছাড়াও, ভবিষ্যৎ প্রযুক্তি তথা মহাকাশ অনুসন্ধানের বিষয় নিয়ে প্রদর্শনীর আয়োজন করা হচ্ছে। বন্দর-কেন্দ্রিক উন্নয়ন ও রণকৌশল নিয়ে আয়োজিত সেমিনারে ভারতকে এশিয়ায় পণ্য পরিবহণ হাব হিসেবে গড়ে তোলার নানা দিক নিয়ে আলোচনা হবে। এছাড়াও, প্রতিরক্ষা ও বিমান সংক্রান্ত ক্ষেত্রে যুক্ত শিল্প সংস্থাগুলির সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য, গুজরাট তথা ভারতে প্রতিরক্ষা ও বিমানচালনা ক্ষেত্রে যে সুযোগ-সুবিধা রয়েছে সে বিষয়ে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের সচেতন করা। এই চুক্তির আওতায়রেল পরিবহণের ক্ষেত্রে সর্বশেষ প্রযুক্তিগত জ্ঞান ও উন্নয়ন সম্পর্কে ভারত ওসংযুক্ত আরব আমিরশাহী পরস্পরের মধ্যে সহযোগিতা বিনিময় করবে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী সেলভি জে জয়াললিতার প্রয়াণে শোকপ্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “সেলভি জয়াললিতার প্রয়াণে আমি গভীরভাবেশোকাহত। তাঁর প্রয়াণে ভারতীয় রাজনীতিতে এক বিরাট শূন্যতার সৃষ্টি হল। সাধারণমানুষের সঙ্গে তাঁর যোগাযোগ, দরিদ্র, মহিলা ও সমাজের প্রান্তীয় অংশের মানুষের জন্যতাঁর দুর্ভাবনা সবসময়েই প্রেরণার উৎস হয়ে থাকবে। এই শোকেরমুহূর্তে আমার চিন্তাভাবনা ও প্রার্থনা তামিলনাডুবাসীর সঙ্গে রয়েছে। এই অপূরণীয়ক্ষতি তাঁরা যেন সাহস ও দৃঢ়তার সঙ্গে সহ্য করতে পারেন, সেজন্য আমি তাঁদের শক্তিদেওয়ার জন্য ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করছি। জয়াললিতারসঙ্গে আমার অসংখ্যবার আলাপচারিতার কথা আমি সবসময়েই মনে রাখব। আলিগড় মুসলীম বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫ সদস্যের একটি প্রতিনিধি দল ভাইস চ্যান্সেলর লেফটানেন্ট জেনারেল জামীর উদ্দিন শাহ্-এর নেতৃত্বে শনিবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির সাথে সাক্ষাৎ করেছে। আমি বিশেষ করে, গুজরাট ফরেন্সিক সায়েন্স ইউনিভার্সিটিতে আসতে পেরে আনন্দ অনুভব করছি। এই বিশ্ববিদ্যালয় এবং এখানে যাঁরা পড়াশুনা করছেন, সেইসব ছাত্রছাত্রীরা দেশে এই বিষয়ে অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। এই বিশ্ববিদ্যালয় সকল বিষয়ে পড়াশুনা করার জন্য নয়। একটি নির্দিষ্ট বিষয় নিয়ে এখানে পড়াশুনা করা হয়। আমি জানি যে, এই গান্ধীনগর আসার পথ ছাত্রছাত্রীদের অত্যন্ত মসৃণ ছিল না। তাঁরা যখন এখানে ভর্তির সিদ্ধান্ত নিয়েছেন, আমি নিশ্চিত যে, অনেকেই তাঁদেরকে জিজ্ঞেস করেছেন – কেন এই বিষয় নিয়ে পড়াশুনা করতে যাচ্ছ ? অনেক বেশি অপরাধ বিষয়ক টিভি দেখার ফল? নাকি পড়ার বই ছেড়ে আগাথা কৃষ্টি কিংবা ফেলুদার বই পড়ে এই সিদ্ধান্ত! কিন্তু তোমরা বিচলিত না হয়ে এই বিষয়টি বেছে নিয়েছো এবং স্রোতের বিপরীতে হেঁটে বর্তমান সময়ের প্রয়োজনের নিরিখে একটি গুরুত্বপূর্ণ পাঠ্যক্রমে শিক্ষিত হয়ে উঠেছ। এটা প্রমাণ করে যে, তোমাদের আত্মবিশ্বাস কত জোরালো আর তোমাদের রয়েছে নিজেদের স্বপ্ন সফল করার লক্ষ্যে ঈশ্বর-প্রদত্ত দৃঢ়প্রত্যয়। এই প্রত্যয় তোমাদের ভবিষ্যৎ জীবনে অনেক সহায়ক হবে। বন্ধুগণ, এটা গর্বের বিষয় যে, অত্যন্ত কম সময়ে জিএফএসইউ (গুজরাট ফরেন্সিক সায়েন্স ইউনিভার্সিটি) শিক্ষাদানে উৎকর্ষের জন্য ন্যাশনাল অ্যাসেসমেন্ট অ্যান্ড অ্যাক্রিডিটেশন কাউন্সিলের বিচারে ‘এ গ্রেড’ পেয়েছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, জিএফএসইউ ভারতের হাতে গোনা কয়েকটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে অন্যতম, যারা যাত্রা শুরুর পরপরই এই সাফল্য অর্জন করেছে। বন্ধুগণ, অপরাধী ও অপরাধের পদ্ধতিগুলি প্রতিনিয়ত পরিবর্তিত হচ্ছে। এই প্রতিনিয়ত পরিবর্তমান অপরাধের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে আপনাদের অপরাধ চিহ্নিতকরণের নতুন নতুন পদ্ধতি গড়ে তুলতে হবে, যাতে একজন অপরাধীও ছাড় না পায়। ডিএনএ প্রোফাইলিং আজ ফরেন্সিক তদন্তের ক্ষেত্রে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এই প্রযুক্তির সাহায্যে এমনসব অপরাধের কিনারা করা গেছে, যা অন্যথা সম্ভব হতোই না। এই বিলের মাধ্যমে আমরা নিশ্চিত করব যাতে সকল ডিএনএ পরীক্ষা বিশ্বস্ত থাকে এবং তথ্যাবলী নিরাপদ থাকে। সরকার সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে অবস্থিত এ ধরণের ডিএনএ বিশ্লেষণ গবেষণাগারগুলিকে শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। চণ্ডীগড়ে অবস্থিত কেন্দ্রীয় ফরেন্সিক বিজ্ঞান গবেষণাগারটিকে নির্ভয়া প্রকল্পের মাধ্যমে আধুনিকীকরণ করা হচ্ছে। আমি নিশ্চিত যে, আগামীদিনে মহিলারা যেসব জঘন্য অপরাধের শিকার হন, সেগুলি নিরুপণ দ্রুত যথাযথভাবে সম্পন্ন করা যাবে। আত্মসম্ভাবনাকে বিশ্বাস করা। লোকার্ডের কাছ থেকে তোমরা শিক্ষা পেয়েছো যে, অপরাধ প্রবণতা এমন একটি জিনিস, যা অপরাধীকে কিছু না কিছু সূত্র ছেড়ে যেতে বাধ্য করে। আমি নিশ্চিত যে, আপনারা যে কোনও অপরাধেরই কিনারা করতে পারবেন। কিন্তু মনে রাখবেন, আপনাদের প্রত্যেককে সমাজে একটি মূল্য সংযোজন করতে হবে। আর এই মূল্য সংযোজনের সময়ে অন্যদের থেকে শিক্ষা গ্রহণ করতেও ভুলবেন না। নতুন নতুন ভাবনাচিন্তা এবং ধারণার জন্য আপনাদের মনকে সবসময় উন্মুক্ত রাখবেন। নিজেদের চিন্তাভাবনার মাধ্যমে বিশ্বকে সমৃদ্ধ করুন আর অন্যদের শ্রেষ্ঠ গুণগুলিকে গ্রহণ করুন। এই বৈচিত্র্য আপনাদের সমৃদ্ধতর ব্যক্তি হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। আর আমি যখন ‘ল অফ প্রোগ্রেসিভ চেঞ্জ’-এর কথা বলব, যেখানে প্রাকৃতিকভাবেই আপনারা যা যা শিখেছেন, তা নিয়ে ভাবার পাশাপাশি ভবিষ্যতের কথা ভাবুন। আমরা এমন বিশ্বে বসবাস করছি, যেখানে সবকিছু প্রকৃত অর্থেই দ্রুত বদলাচ্ছে। যে কোনও নতুন ভাবনা পুরনো হতে সময় লাগছে না। তেমনই আপনারাও সারা বিশ্বে পরিবর্তমান ধ্যান-ধারণার কেন্দ্রে রয়েছেন। আপনাদের শিক্ষা ও বুদ্ধিমত্তা আপনাদের গতানুগতিক চিন্তাভাবনার বাইরে গিয়ে অপরাধ ও তার কারণ খুঁজে বের করার প্রশিক্ষণ দিয়েছে। এই দক্ষতা যাতে আপনাদের শুধু দ্রুততাই নয়, পরিবর্তিত সময়ের সঙ্গে তাল রেখে কিছু ইতিবাচক পরিবর্তন আনতেও সাহায্য করে, আর আপনারা এই পৃথিবীকে আরও বেশি বাসযোগ্য করে তুলতে পারেন। তাহলে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম কৃতজ্ঞতার সঙ্গে আপনাদের ধন্যবাদ জানাবে। বন্ধুগণ, যুবসমাজের অংশগ্রহণ ছাড়া কোনও প্রকল্প বা উদ্যোগ সফল হতে পারে না। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, আপনারা যে জ্ঞান লাভ করেছেন তা আপনাদের দেশের সেবায় কার্যকরি ভূমিকা নিতে এবং পেশাগত সাফল্য অর্জন করতে সাহায্য করবে। আশা করি, আপনারা নিজেদের বুদ্ধিমত্তাকে নিয়মিত শান দিয়ে যাবেন। আমি সমস্ত কৃতি ছাত্রছাত্রীদের তাঁদের উজ্জ্বল ও স্পন্দিত ভবিষ্যত কামনা করি। ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পূর্ব জাপানের ভয়াল ভূমিকম্পের পঞ্চম বার্ষিকীতে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “পূর্ব জাপানের সেই বিরাট ভূমিকম্পের পঞ্চমবার্ষিকীতে ভারত ক্ষতিগ্রস্তদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানায়। মাননীয় প্রেসিডেন্ট, আপনার সুন্দর বক্তব্যের জন্য ধন্যবাদ জানাই। নাইরোবিতে উপস্থিত হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। জীবনে আপনার চলার পথ ছিল বরাবরই কেনিয়াকে স্বাধীন করে তোলার লক্ষ্যে এক বিশেষ যাত্রাপথ। আপনার সঙ্গে এখানে আজ এইভাবে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি নিজেকে সম্মানিত বোধ করছি। কেনিয়া হল ভারতের এক বিশেষ বন্ধু ও বিশ্বস্ত সহযোগী। আমাদের দু’দেশের সম্পর্কের পুরো বিষয়টি নিয়ে আজ আমি পর্যালোচনায় মিলিত হয়েছিলাম মাননীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। বিশ্ব অর্থনীতিতে যেক’টি উজ্জ্বল আলোকবিন্দু রয়েছে ভারত হল তার অন্যতম। অন্যদিকে, কেনিয়ায় রয়েছে অফুরন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনা। ভারত শুধুমাত্র কেনিয়ার বৃহত্তম বাণিজ্যিক অংশীদারই নয়, এদেশে দ্বিতীয় বৃহত্তম বিনিয়োগকারী দেশও বটে। কিন্তু এখনও আরও অনেক কিছুই করার জন্য আমাদের দু’দেশের সামনে রয়েছে এক অনন্ত সম্ভাবনা। আমাদের দু’দেশের অর্থনীতি যে আরও নানা দিক থেকে লাভবান হতে পারে সে ব্যাপারে আমি সহমত মাননীয় প্রেসিডেন্টের সঙ্গে। আমাদের এই প্রচেষ্টা আঞ্চলিক পর্যায়েও অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির এক বলিষ্ঠ বাতাবরণ গড়ে তুলতে পারে। ভারত ও কেনিয়া হল দুটি বিকাশশীল দেশ। শুধু তাই নয়, উদ্ভাবনের কাজকেও উৎসাহদান করি আমরা উভয়েই। এম-পেসা-র সাফল্য হল এই উদ্ভাবন প্রচেষ্টারই এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত যা সমগ্র বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে ক্ষমতায়নের স্বাদ এনে দিয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে উন্নয়নের কাজে আমাদের অংশীদারিত্ব দু’দেশের সম্পর্কের উন্নয়নের একটি মূল স্তম্ভ। কৃষি সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতি, বস্ত্র এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পের উন্নয়ন প্রকল্পগুলিতে ভারতের ঋণ সহায়তা কর্মসূচির দ্রুত রূপায়ণে আমরা আগ্রহী। এই প্রসঙ্গে একথা জানতে পেরে আমি খুশি যে কেনিয়াট্টা ন্যাশনাল হসপিটালে অচিরেই বসতে চলেছে ভারতে নির্মিত ক্যান্সার চিকিৎসার যন্ত্র ‘ভাবাট্রন’। একথা আমাদের স্বীকার করতে হবে যে যুবসমাজকে সফল হওয়ার সুযোগ না দিলে আমাদের সমাজ কখনই এগিয়ে যেতে পারে না। তাই শিক্ষা, বৃত্তিগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রে কেনিয়ার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আমরা আগ্রহী। এই কারণে নৌ-নিরাপত্তা ক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতা আমাদের সার্বিক প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ স্থান অধিকার করে রয়েছে। মাত্র কিছুক্ষণ আগেই প্রতিরক্ষা সহযোগিতা সম্পর্কিত যে চুক্তিটি দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত হল তা আমাদের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তুলবে। সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলির মধ্যে রয়েছে আরও বেশি সংখ্যক কর্মী বিনিময়, জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা বিনিময়, প্রশিক্ষণ ও প্রতিষ্ঠান স্থাপন, জল-বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে পারস্পরিক সহযোগিতার প্রসার এবং বিভিন্ন সরঞ্জাম ও যন্ত্রপাতির যোগান। সন্ত্রাসবাদ এবং চরমপন্থী মতাদর্শের প্রচার ও প্রসার যে আমাদের দেশ, জনসাধারণ, সংশ্লিষ্ট অঞ্চল তথা সমগ্র বিশ্বের কাছেই একটি সাধারণ চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে একথা স্বীকার করে নিয়েছি প্রেসিডেন্ট ও আমি উভয়েই। তাই, সাইবার নিরাপত্তা, মাদক ও নেশাদ্রব্যের চোরাচালান এবং মানুষ পাচারের বিরুদ্ধে আমাদের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তোলার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি আমরা। গতকাল প্রেসিডেন্ট এবং আমি এক অবিস্মরণীয় মুহূর্তের সাক্ষী ছিলাম কেনিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের এক অনুষ্ঠানে। প্রেসিডেন্ট উহুরু যথার্থই বলেছেন যে এই ভারতীয় সম্প্রদায়ের মানুষরা হলেন কেনিয়ার গর্বিত অধিবাসী, যদিও তাঁদের মূল শিকড় প্রোথিত ছিল ভারতে। সমাজ ও অর্থনীতির ক্ষেত্রে আমাদের দু’দেশের সংযোগ ও যোগাযোগ যত গভীরতর হয়ে উঠছে, এই সম্প্রদায়ের মানুষ ক্রমশ হয়ে উঠছেন দু’দেশের মধ্যে মৈত্রী বন্ধনের এক মজবুত সংযোগ সেতু। একথা ঘোষণা করতে পেরে আমি আনন্দিত, যে উজ্জ্বল ভারতীয় সংস্কৃতি হয়ে উঠেছে কেনিয়ার সমৃদ্ধ সমাজ ব্যবস্থার একটি বিশেষ অঙ্গ, তা বিশেষভাবে প্রত্যক্ষ করা যাবে এ বছরের শেষের দিকে কেনিয়ায় আয়োজিত ভারতোৎসবে। পরিশেষে আপনাকে এবং কেনিয়ার সরকার ও জনগণকে আমি আরও একবার ধন্যবাদ জানাই আমাকে সাদর ও অন্তরিক অভ্যর্থনা জানানোর জন্য। ভারতে আপনাকে স্বাগত জানানোর অপেক্ষায় রয়েছি আমি এবং ভারতের জনসাধারণ। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। মালয়েশিয়ার সংসদ সদস্য দাতুক সেরি আনওয়ার ইব্রাহিম আজ নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শ্রী ইব্রাহিমের সঙ্গে ছিলেন সেদেশের আরও দুই সাংসদ সদস্য শ্রী কেশভন সুব্রহ্মনিয়ম ও শ্রী সান্থারা কুমার রামানাইডু। মালয়েশিয়ার পি কে আর রাজনৈতিক দলের সভাপতি হিসাবে শ্রী ইব্রাহিম সদ্য নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁকে অভিন্দন জানান। গত বছরের মে মাসে মালয়েশিয়ায় তাঁদের দুজনের সাক্ষাৎকারের কথাও প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন। মালয়েশিয়ার প্রধানমন্ত্রী ডঃ মহাথির মহম্মদের জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁর উষ্ণ শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আজ একবৈঠকে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ও পেনশনারদের জন্য আরও এক কিস্তি মহার্ঘ ভাতা/মহার্ঘত্রাণ সহায়তা দেওয়ার প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। সৈনিকরা কিভাবে এর শিকার, তা নিয়ে আগে বলব। যাঁরা অনেক বছর ধরে দেশের শাসন ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা নিজ নিজ শাসনকালে এত বেশি প্রতিরক্ষা সম্পর্কিত কেলেঙ্কারিতে কেন জড়িত? তাঁরা মিলিটারি জীপ ক্রয় সংক্রান্ত কেলেঙ্কারি থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে অস্ত্র কেলেঙ্কারি, ডুবো জাহাজ কেলেঙ্কারি এবং হেলিকপ্টার কেলেঙ্কারিতে জড়িয়েছেন। এসব কারণে প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রটি ভীষণ রকম ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। যথাসময়ে সঠিক চুক্তি সম্পাদিত না হওয়ায় প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে আধুনিকীকরণ প্রক্রিয়া ব্যবহত হয়েছে। এই প্রতিটি চুক্তিতে কারা জড়িত ছিলেন? আর দিল্লির লুটেরারা অবশ্যই জানে। এটা সবাই জানেন যে, আমাদের সশস্ত্র বাহিনী নিয়মিত বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটের প্রয়োজন। ২০০৯ সালে আমাদের সেনাবাহিনী সরকারের কাছে ১ লক্ষ ৮৬ হাজার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেটের প্রয়োজন জানিয়েছিল। আপনারা জেনে লজ্জিত হবেন যে, ২০০৯ থেকে ২০১৪’র মধ্যে একটিও বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট কেনা হয়নি। আমরা শাসন ক্ষমতায় এসে ২ লক্ষ ৩০ হাজার বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট কিনেছি। আর এখন আমি ভিক্ষা বন্টন নিয়ে কথা বলব। যাঁরা এত বছর ক্ষমতায় ছিলেন, তাঁরা ভিক্ষা বন্টন পছন্দ করতেন। সেই ভিক্ষা বন্টনের লক্ষ্য দরিদ্রদের ক্ষমতায়ন ছিল না। সেই ভিক্ষা এমনভাবেই বন্টিত হ’ত, যাতে গরিবরা গরিবই থেকে যান আর তাঁদের রাজনৈতিক প্রভূদের দয়ায় বেঁচে থাকেন। এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ হ’ল কৃষি ঋণ মকুবের প্রক্রিয়া। কোনও অর্থনীতিবিদ বা নীতি বিশেষজ্ঞ বলেন না যে, ঋণ মকুবের মাধ্যমে আমাদের কৃষি সংক্রান্ত কোনও সমস্যার সমাধান সম্ভব। এটি কাটা ঘায়ে মলম লাগানোর বেশি আর কিছুই হতে পারে না। প্রত্যেক ১০ বছরে ইউপিএ একবার করে কৃষি ঋণ মকুবের ব্যবস্থা করেছে। তাঁদের সম্পূর্ণ শাসনকালে এ ধরণের কোনও পদক্ষেপ না নিয়ে নির্বাচনের আগেই কৃষি ঋণ মকুব করেছে। কিন্তু তাঁদের এই ঋণ মকুব বাস্তবসম্মত ছিল না। এর দ্বারা ২০ শতাংশের কম কৃষকরাই উপকৃত হয়েছেন। তবুও তাঁরা এই কৃষি ঋণের জোরে নির্বাচনে জেতার চেষ্টা করেছে। আমরা ভিন্ন দৃষ্টিকোণ থেকে বিষয়টিকে গ্রহণ করেছি। কৃষকদের উন্নয়নে আমরা পিএম – কিষাণ সম্মাননিধি নামক একটি সংহত ব্যবস্থা গড়ে তুলেছি। এই ব্যবস্থা কোনও চুক্তি কিংবা ভিক্ষা বন্টন প্রক্রিয়া নয়। দেশের ১২ কোটি কৃষকদের তিন কিস্তিতে ৬ হাজার টাকা দেওয়া হবে। গত পয়লা ফেব্রুয়ারি এই প্রকল্প ঘোষণা করা হয়েছে এবং ২৪ ফেব্রুয়ারি এটি চালু হয়েছে। আমরা ২৪ দিন ধরে দিবারাত্র কাজ করে এটি চালু করেছি। ঋণ মকুবের মতো হলেও পিএম – কিষাণ সম্মাননিধি একটি দীর্ঘ মেয়াদী সহায়ক ব্যবস্থা। এই এনডিএ সরকারের আমলেই কৃষকদের সম্মান জানাতে ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির ক্ষেত্রে ঐতিহাসিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। পূর্ববর্তী সরকারের আমলে এই ন্যূনতম সহায়ক মূল্য সংক্রান্ত ফাইলটি প্রায় সাত বছর ধরে লালফিতের ফাঁসে আটকে ছিল। আসলে ১০ শতাংশ ‘কমিশন’ নিয়ে কাজ করতেন আর আমরা ১০০ শতাংশ ‘মিশন’ নিয়ে কাজ করি। সেজন্যই সার্বিক উন্নয়ন সম্ভব হচ্ছে। তাঁদের ৫৫ বছরের শাসনের তুলনায় আমাদের ৫৫ মাসের শাসনে দৃষ্টিভঙ্গীগত পার্থক্য রয়েছে। তাঁদের ছিল ‘টোকেন অ্যাপ্রোচ’ আর আমাদের হ’ল ‘টোটাল অ্যাপ্রোচ’। স্বাধীনতার পর থেকেই দেশের শাসন ক্ষমতায় থাকা দলে একটি জনপ্রিয় শ্লোগান ছিল – গরিবি হটাও! কিন্তু এই দারিদ্র্য কিভাবে অপসারিত হবে, তা নিয়ে কোনও নির্দিষ্ট পরিকল্পনা ছিল না আর কোনও উদ্যোগও ছিল না। কিন্তু তাঁরা দেশের কোণায় কোণায় আওয়াজ তুলে গেছেন – গরিবি হটাও, গরিবি হটাও। তাঁরা জানতেন যে, দারিদ্র্য দূরীকরণের জন্য আপামর জনগণের অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণের প্রয়োজন রয়েছে। ২০১৪ সালের আগে তাঁদের নির্বাচনী কর্মসূচির অন্যতম দফা ছিল পরিবার পিছু বার্ষিক গ্যাস সিলিন্ডার ৯টি থেকে বাড়িয়ে ১২টি করা। কল্পনা করুন, এত বড় রাজনৈতিক দল, যারা পরিবার পিছু বার্ষিক গ্যাস সিলিন্ডারের সংখ্যা হ্রাস করে ৯টিতে সীমাবদ্ধ রেখেছিল, তারা নির্বাচনে জিতলে বার্ষিক ১২টি সিলিন্ডার দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে। এই ধরণের ‘টোকেন’ প্রদান প্রথা আমাদের কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। কাজ করতে হলে সামগ্রিকতার সঙ্গে করতে হবে। সেজন্য আমরা ১০০ শতাংশ সম্পন্ন করার লক্ষ্য নিয়ে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করি। জন ধন – সকলের জন্য ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তিকরণ। সবার জন্য বাড়ি – ২০২২ সালের মধ্যে প্রত্যেক ভারতীয়র মাথার ওপর ছাদ সুনিশ্চিত করা। আমরা সেই লক্ষ্যে দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলেছি। সকলের জন্য স্বাস্থ্য – আয়ুষ্মান ভারত – সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবা থেকে কোনও ভারতবাসী যেন বঞ্চিত না হন, সেদিকে লক্ষ্য রেখে এই প্রকল্প চালু করা হয়েছে। এর মাধ্যমে ৫০ কোটি ভারতবাসী উপকৃত হবেন। এক পদ, এক পেনশন – ইউপিএ সরকার নির্ধারিত ৫০০ কোটির অপ্রতুল তহবিল থেকে অনেক বেশি প্রায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করে এনডিএ সরকার এই প্রকল্প বাস্তবায়িত করেছে। উজ্জ্বলা যোজনা – আমাদের পূর্বসূরীরা বছরে পরিবার পিছু রান্নার গ্যাসের ৯টি সিলিন্ডার দেবেন না ১২টি দেবেন, তা নিয়ে দ্বিধায় ছিলেন। আমরা কোটি কোটি পরিবারকে ধোঁয়ামুক্ত রান্নাঘর উপহার দিতে রাত-দিন পরিশ্রম করেছি। সকলের জন্য বিদ্যুৎ – প্রত্যেক গ্রাম ও প্রতিটি পরিবারে বিদ্যুৎ সংযোগ সুনিশ্চিত করার জন্য আমরা কাজ করে চলেছি। সুতরাং আপনারা বুঝতে পারছেন যে, আমরা অনেক বেশি গতি ও অধিকমাত্রায় কাজ করছি। সবকিছুই যেন সবার জন্য হয়, হাতে গোনা কয়েকজনের জন্য নয়। ‘টোকেন’ ব্যবস্থার অবসান ঘটিয়ে দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কাছে উন্নয়নের সুফল পৌঁছে দেওয়ার জন্য সম্পূর্ণ রূপান্তরণের পথে আমরা কাজ করে চলেছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী স্বামী বিবেকানন্দের জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধার্ঘ্য অর্পণ করেছেন। স্লোভাক প্রজাতন্ত্রের বিদেশ এবং ইউরোপীয় বিষয় সংক্রান্ত দপ্তরের মন্ত্রী তথা রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণপরিষদের নব-নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট মিঃ মিরোস্ল্যাভ ল্যাজ্যাক আজ এখানে দেখা করেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের৭২তম সাধারণ পরিষদের প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচিত হওয়ার জন্য মিঃ মিরোস্ল্যাভল্যাজ্যাককে অভিনন্দিত করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ৭২তম সাধারণ পরিষদেরঅগ্রাধিকারপ্রাপ্ত বিষয়গুলি সম্পর্কে মিঃ ল্যাজ্যাক এদিন আলোচনা করেন শ্রীনরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। রাষ্ট্রসঙ্ঘে নতুন দায়িত্বভার পালনের ক্ষেত্রে ভারত যে মিঃল্যাজ্যাককে পূর্ণ এবং গঠনমূলক সহযোগিতা করে যাবে সে সম্পর্কে তাঁকে প্রতিশ্রুতিদেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নেপালের পুলিশের গুলিতে বিহারের এক যুবকের মৃত্যুর ঘটনায় গভীর দুঃখ প্রকাশ করে এ ঘটনার নিন্দা করেছেন। নেপালের প্রধানমন্ত্রী শ্রী কে পি ওলি-এর সঙ্গে শ্রী মোদী সোমবার এ নিয়ে কথা বলেন। ঐ দুর্ভাগ্যজনক ঘটনায় উদ্বেগ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী এ বিষয়ে বিশদ তথ্য জানতে চান। খাদ্য ও অন্যান্য অত্যাবশ্যক সামগ্রীর জোগান নেপালে বজায় রাখা সম্পর্কে শ্রী ওলি’কে আশ্বস্ত করে শ্রী মোদী বলেন, ভারতের দিক থেকে এই জোগানে কোনও রকম বাধা নেই। দক্ষতা বিকাশ এবং বৃত্তিগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণের ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসারেরলক্ষ্যে গ্রেট ব্রিটেন এবং উত্তর আয়ারল্যান্ড যুক্তরাজ্যের সঙ্গে ভারতের একটি মউস্বাক্ষরের প্রস্তাবে আজ অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে মউ স্বাক্ষরের বিষয়টিঅনুমোদন লাভ করায় বৃত্তিগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং দক্ষতা বিকাশের ক্ষেত্রে ভারত ওযুক্তরাজ্যের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও প্রসার লাভ করবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেন। আজ এমনই একটি মুহূর্ত। ভারত সাফল্যের সঙ্গে উপগ্রহ বিধ্বংসী ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালিয়েছে। ‘মিশন শক্তি’র সাফল্যের সঙ্গে যুক্ত প্রত্যেককে অভিনন্দন। এই অভিযানের মধ্য দিয়ে ভারতীয় বিজ্ঞানী মহলের অসাধারণ নৈপুণ্য এবং দেশের মহাকাশ কর্মসূচির সাফল্য প্রতিফলিত হয়েছে। ‘মিশন শক্তি’ দুটি কারণে বিশেষ হয়ে উঠেছে: Øভারত বিশ্বের চতুর্থ দেশ হিসাবে এ ধরণের বিশেষত্ব ও সর্বাধুনিক দক্ষতার অধিকারী হয়ে উঠল। Ø এই অভিযান সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে পরিচালিত। মহাকাশ শক্তিধর দেশ হিসেবে ভারতের অবস্থান আরও দৃঢ় হল। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ (১৬ই মে) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে ভারতীয় রেল ও ফরাসী সংস্হা এসএনসিএফ-এর মধ্যে স্বাক্ষরিত রেলে প্রযুক্তিগত সহায়তা সংক্রান্ত চুক্তির বিষয়ে অবহিত করা হয়। গত ১০ই মার্চ এই সমঝোতাপত্রটি স্বাক্ষরিত হয়। এই চুক্তির ফলে ভারতীয় রেল ট্রেন চলাচল সংক্রান্ত সর্বশেষ তথ্য জানতে পারবে এবং এক্ষেত্রে ফরাসী সংস্হার সঙ্গে মত বিনিময়ও করতে পারবে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন প্রচেষ্টা সম্পর্কিত একটি প্রদর্শনীরবেশ কয়েকটি স্টল এদিন ঘুরে দেখেন দুই প্রধানমন্ত্রী। এই উপলক্ষে এক সমাবেশে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী বলেন, ভারত ওইজরায়েলের জনসাধারণকে পরস্পরের আরও কাছে নিয়ে আসার ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের একটিগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ইজরায়েলের প্রযুক্তিগত দক্ষতা ও সৃজনশীলতা সম্পর্কেসমগ্র বিশ্বই আজ ওয়াকিবহাল। শ্রী মোদী বলেন, ভারতের যুবশক্তির রয়েছে যথেষ্ট উদ্যম ও কর্মশক্তি। তাঁদের শুধুপ্রয়োজন প্রাতিষ্ঠানিক সমর্থন ও উৎসাহদান। জল, খাদ্য, স্বাস্থ্য এবং শক্তির মতো ক্ষেত্রগুলিতে ভারত-ইজরায়েল সহযোগিতারবিষয়গুলি প্রধানমন্ত্রী বর্ণনা করেন তাঁর এদিনের বক্তব্যে। নয়াদিল্লি , ২৬ ফেব্রুয়ারি , ২০১৫ মালয়েশিয়ার গুজরাটি অ্যাসোসিয়েশনের ৩০ সদস্যের প্রতিনিধিদল শনিবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করলেন। বর্তমানে প্রতিনিধিদল ভারত সফরে আসেন। ভারতের বিকাশ নিয়ে স্বপ্নের বাস্তবায়নের উদ্দেশ্যে প্রধানমন্ত্রীকে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা শুভেচ্ছা জানান। কারণ ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রটি দেশের অর্থনৈতিকঅগ্রগতির পক্ষে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। গুণমান নিয়ন্ত্রণের বিষয়টিতে এই ক্ষেত্রটিকেবিশ্বমানের হয়ে উঠতে হবে। প্রধানমন্ত্রীর মতে, দলিতদের মধ্যে শিল্পোদ্যোগস্থাপনের উৎসাহকে জাগিয়ে তুলতে পারলে আখেরে লাভবান হবে দেশই। তিনি বলেন,যুবসম্প্রদায়ের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যাঁদের স্বপ্নই হল শিল্পোদ্যোগ স্থাপনের মধ্যদিয়ে কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। বিশ্ব বাণিজ্যে মন্দাজনিত পরিস্থিতি একটি বড় উদ্বেগের কারণ। এই ধরনের পরিস্থিতিতে বিশ্বের অর্থনৈতিক পরিবেশ প্রতিকূল থাকার ফলে বাণিজ্যিক প্রসারের সম্ভাবনাও অনেকাংশে হ্রাস পায়। তাই, আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক অগ্রগতি ত্বরান্বিত করার প্রচেষ্টার মাধ্যমে বাণিজ্যিক প্রসারের উদ্যোগ গ্রহণ করা প্রয়োজন। মনে রাখতে হবে, বিশ্ব অর্থনীতির স্বার্থে এক স্বচ্ছ, সমানভাবে বন্টনযোগ্য, পক্ষপাতহীন এবং নিময়নীতিভিত্তিক বাণিজ্যিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা খুবই জরুরি। আমাদের মনে রাখতে হবে যে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগের যত প্রসার ঘটবে, বিশ্বব্যাপী কর্মসংস্থানের সুযোগও সেই অনুপাতে বৃদ্ধি পাবে। বিশ্ব অর্থনীতির সুষম ও নিরন্তর বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন শ্রম ও দক্ষতাকে অলস না রেখে তা আরও গতিশীল করে কাজে লাগানোর। জ্বালানি শক্তির কথা চিন্তা করতে গেলে তিনটি মূল বা প্রাথমিক চ্যালেঞ্জের কথা আমাদের মনে রাখতে হবে – উন্নয়নশীল দেশগুলিতে শক্তির বৃদ্ধি ও উৎপাদনের লক্ষ্যে জ্বালানি, যে কোটি কোটি মানুষের কাছে জ্বালানি শক্তির সুযোগ এখনও পৌঁছয়নি তাদের প্রয়োজনের দিকে নজর দেওয়া এবং বিশুদ্ধ ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য জ্বালানির উত্তরোত্তর ব্যবহার বাড়িয়ে তোলা। আমাদের আরও মনে রাখতে হবে যে জ্বালানি, পরিবেশ এবং অর্থনীতি পরস্পর সম্পৃক্ত। এই কারণেই ভারত দেশে জ্বালানি শক্তির চাহিদার দিকে নজর রেখে তার উৎপাদন নিরন্তরভাবে বাড়িয়ে তোলার কাজে সচেষ্ট রয়েছে। দূষণহীন কয়লা প্রযুক্তি গড়ে তুলতে আমরা নিরলসভাবে চেষ্টা করে চলেছি। পরমাণু শক্তির প্রসারের লক্ষ্যে আমাদের একটি উচ্চাকাঙ্ক্ষামূলক প্রকল্প রয়েছে। জীবাশ্ম জ্বালানির ব্যবহার ক্রমশ কমিয়ে আনতে আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে দেশের মোট শক্তি চাহিদার ৪০ শতাংশই অন্যান্য উৎস থেকে পূরণ করা হবে। আন্তর্জাতিক সমর্থন ও সহযোগিতা আমাদের লক্ষ্যপূরণের পথে এগিয়ে যেতে সাহায্য করবে। জি-২০-র সদস্য রাষ্ট্র হিসেবে আমাদের প্রয়োজন বেশ কিছু ব্যবস্থা গ্রহণের – • বিশুদ্ধ জ্বালানি সকলের নাগালের মধ্যে পৌঁছে দিতে একদিকে যেমন আর্থিক সহায়তার পরিমাণ বাড়াতে হবে, অন্যদিকে তেমনই নজর দিতে হবে প্রযুক্তি হস্তান্তরের দিকে। • দূষণমুক্ত কয়লা প্রযুক্তি এবং কয়লা থেকে গ্যাস উৎপাদন সংক্রান্ত গবেষণার কাজকে আরও জোরদার করে তুলতে হবে। • আমাদের গড়ে তুলতে হবে ত্রুটিহীন এক পরমাণু শক্তি প্রযুক্তি। • জ্বালানি শক্তির সর্বোচ্চ অথচ নিয়ন্ত্রিত ব্যবহার আমাদের সম্ভব করে তুলতে হবে। • আমাদের কাজ করে যেতে হবে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গ্যাস বিপণনের জন্য বাজার গড়ে তোলার লক্ষ্যে। • জ্বালানি শক্তির প্রসার ও উন্নয়নের লক্ষ্যে বিশ্বের বর্তমান পরিচালন কাঠামোর মধ্যে যে সমস্ত অর্থনীতি ক্রমশ বিকাশ লাভ করছে তাদের সমর্থন ও সহযোগিতা যুগিয়ে যেতে হবে আমাদের। বি পি এল পরিবারগুলির কোন মহিলা সদস্যের নামে বিনা খরচে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে ‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’ নামে একটি কর্মসূচি অনুমোদিত হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে বৈঠকটি আজ এখানে অনুষ্ঠিত হয়। এই কর্মসূচির আওতায় বি পি এল পরিবারগুলিতে ৫ কোটি রান্নার গ্যাসের সুযোগ পৌঁছে দিতে ৮ হাজার কোটি টাকার সংস্থান রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে। বি পি এল পরিবারগুলিতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ পিছু ১,৬০০ টাকা করে আর্থিক সহায়তা বরাদ্দ করা হয়েছে। বি পি এল পরিবারগুলিকে চিহ্নিত করা হবে রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলির সঙ্গে পরামর্শক্রমে। ২০১৬-১৭, ২০১৭-১৮ এবং ২০১৮-১৯ – এই তিনটি আর্থিক বছরে রূপায়িত হবে এই কর্মসূচিটি। দেশের দরিদ্রতম পরিবারগুলির কোটি কোটি মহিলা সদস্যের কল্যাণে এই ধরনের একটি কর্মসূচি এই প্রথম চালু করতে চলেছে পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক। উল্লেখ্য, আমাদের দেশের দরিদ্র পরিবারগুলি সাধারণভাবে রান্নার গ্যাসের সুযোগ থেকে বঞ্চিত। শহর ও আধা-শহর এলাকায় মূলত উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষরাই এই সুযোগ-সুবিধা ভোগ করে থাকেন। দরিদ্র পরিবারগুলিতে রান্নাবান্নার কাজে যে জীবাশ্ম জ্বালানি সচরাচর ব্যবহার করা হয়, তা স্বাস্থ্যের পক্ষে বেশ ক্ষতিকর বলে প্রমাণিত হয়েছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (হু)-র এক সমীক্ষা অনুযায়ী ভারতে ৫ লক্ষ মৃত্যুর ঘটনা ঘটে শুধুমাত্র এই ধরনের জ্বালানি ব্যবহারের ফলে। অধিকাংশ মৃত্যুই হৃদরোগ, শ্বাসজনিত সংক্রমণ এবং ফুসফুসের কারণে যার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগ রয়েছে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের। এই কারণে দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারের ছেলে-মেয়েরা নানা ধরনের শ্বাসজনিত সংক্রমণের শিকার হয়ে পড়ে। বিশেষজ্ঞদের মতে, রান্না ঘরে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের মাধ্যমে আগুন জ্বলতে থাকায় যে ক্ষতি হয় তা প্রতি ঘণ্টায় ৪০০টি সিগারেট পুড়ে যাওয়ার ফলে পরিবেশের যে ক্ষতি হয় তার সমান। বি পি এল পরিবারগুলিতে রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার ফলে এল পি জি-র আওতায় নিয়ে আসা সম্ভব হবে দেশের সবক’টি পরিবারকেই। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী গত ২৯ ফেব্রুয়ারির বাজেট ভাষণে ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরের জন্য ২ হাজার কোটি টাকা সংস্থানের কথা ঘোষণা করেছিলেন দারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী একজন করে মহিলা সদস্যের নামে মোট ১.৫ কোটি রান্নার গ্যাসের সংযোগ দেওয়ার লক্ষ্যে। এক বার্তায়প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “জগদলপুর-ভুবনেশ্বর এক্সপ্রেস লাইনচ্যুত হওয়ার ঘটনায় যাঁরাতাঁদের প্রিয়জনকে হারিয়েছেন, আমি সমান উদ্বিগ্ন তাঁদের মতোই। ট্রেন দুর্ঘটনায়আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এই প্রার্থনা জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (৭ মার্চ) নতুন দিল্লির ৭ লোককল্যাণ মার্গে এক অনুষ্ঠানে দৃষ্টিহীনদের উপযোগী মুদ্রার নতুন সিরিজ প্রকাশ করেছেন। নতুন সিরিজের অঙ্গ হিসেবে যে মুদ্রাগুলি আজ প্রকাশ করা হয়েছে, সেগুলি হল – ১ টাকা, ২ টাকা, ৫ টাকা, ১০ টাকা ও ২০ টাকার মুদ্রা। এই অনুষ্ঠানে দৃষ্টিহীন শিশুদের বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। দৃষ্টিহীন শিশুদের আপ্যায়ন করে প্রধানমন্ত্রী সন্তোষ প্রকাশ করেন এবং এদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সুযোগ পাওয়ায় তাদের ধন্যবাদ দেন। নতুন সিরিজের এই মুদ্রাগুলি প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, কেন্দ্রীয় সরকার লাইনের শেষ প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা মানুষের কাছে পৌঁছনোর লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই এবং দৃষ্টিহীনদের বিষয়টিতে গুরুত্ব দিয়ে আজ নতুন সিরিজের এই মুদ্রাগুলি প্রকাশ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথক বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন বিভিন্ন অর্থ মূল্যের নতুন এই মুদ্রাগুলি দৃষ্টিহীনদের বিশেষভাবে উপকারে আসবে। দৃষ্টিহীন মানুষেরা এই মুদ্রাগুলির ফলে উপকৃত হবেন এবং তাঁদের মধ্যে আত্মবিশ্বাস বাড়বে। শ্রী মোদী এই মুদ্রাগুলির নকশা রচনার জন্য জাতীয় নকশা প্রণয়ন প্রতিষ্ঠান, সিকিউরিটি প্রিন্টিং অ্যান্ড মিন্টিং কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া লিমিটেড এবং অর্থ মন্ত্রককে ধন্যবাদ দেন। দৃষ্টিহীন শিশুদের সঙ্গে আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী তাদের ধন্যবাদ দিয়ে বলেন, বিশেষভাবে সক্ষম মানুষের স্বার্থের কথা ভেবেই নতুন সিরিজের এই মুদ্রাগুলি চালু করা হচ্ছে। নতুন এই মুদ্রাগুলি বাজারে আসার ফলে তাদের দৈনন্দিন জীবনযাপন আরও সহজ হবে। দৃষ্টিহীন মানুষরা যাতে সহজেই নতুন সিরিজের এই মুদ্রাগুলি ব্যবহার করতে পারে, তার জন্য একাধিক বিশেষ বৈশিষ্ট্যসম্পন্ন দিক এতে সামিল করা হয়েছে। নতুন এই মুদ্রাগুলির আকার ও ওজন বাড়ানো হয়েছে। ২০ টাকার মুদ্রাটিতে কোন খাঁজ ছাড়াই ১২টি পল থাকবে। বাকি মুদ্রাগুলি গোলাকার আকৃতির। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার (পয়লা অক্টোবর) ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি শ্রী জোকো উইডোডোর সঙ্গে টেলিফোনে যোগাযোগ করেন। ইন্দোনেশিয়ার সুলাওয়েসি অঞ্চলে সম্প্রতি ভূমিকম্প ও সুনামির ফলে বহু মানুষের জীবনহানির ঘটনায় প্রধানমন্ত্রী নিজে ও ভারতবাসীর পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করে রাষ্ট্রপতি উইডোডোকে সমবেদনা জানান। ইন্দোনেশিয়ায় এমন বড় মাপের প্রাকৃতিক দুর্যোগের ফলে বিশাল ক্ষয়ক্ষতির মোকাবিলায় ইন্দোনেশিয়াবাসী যে সাহস দেখিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন। ইন্দোনেশিয়ার আন্তর্জাতিক সাহায্য প্রার্থনার প্রতিক্রিয়ায় প্রধানমন্ত্রী জানান, ভারতের উপকূলবর্তী প্রতিবেশী ও বন্ধু দেশ ইন্দোনেশিয়াকে ভারত সবরকম সাহায্য দেবে। ইন্দোনেশিয়ার এই দুর্যোগে প্রাণহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ ও ভারতের ত্রাণ সাহায্যের আশ্বাসের জন্য রাষ্ট্রপতি উইডোডো প্রধানমন্ত্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানান। আজকাল অনেক জায়গা থেকে ভালো বর্ষার খবর আসছে। কোথাও কোথাও অতিরিক্ত বর্ষা চিন্তার কারণ হয়ে উঠেছে, অন্যদিকে কিছু জায়গায় মানুষ এখনও বর্ষার প্রতীক্ষা করছেন। ভারতের বিশালত্ব ও বিবিধতার কারণে কখনও কখনও বর্ষাও তার পছন্দ-অপছন্দ প্রকট করে। কিন্তু এজন্য বর্ষাকে দোষারোপ করা ঠিক নয়। মানুষই প্রকৃতির সঙ্গে বিরোধের পথে এগিয়ে গেছে আর তারই ফলস্বরূপ কখনো কখনো প্রকৃতি আমাদের উপর বিরূপ হয়ে পড়ে। আপনারা টিভি-তে নিশ্চয় দেখেছেন যে থাইল্যাণ্ডে ১২ জন কিশোর ফুটবল খেলোয়াড়ের একটি দল এবং তাদের কোচ একটি গুহাতে বেড়াতে গিয়েছিল। ওখানে গুহাতে যেতে এবং সেখান থেকে বেরিয়ে আসতে সাধারণভাবে কয়েক ঘণ্টা সময় লাগে। কিন্তু ঐ দিন ভাগ্যদেবীর অন্যরকম ইচ্ছা ছিল। ওরা যখন গুহার ভিতরে অনেকটা ঢুকে গেছে, তখন হঠাৎ প্রচুর বৃষ্টির কারণে গুহার মুখে প্রচুর জল জমে যায়। খেলোয়াড়দের বাইরে বেরনোর রাস্তা বন্ধ হয়ে যায়। কোন রাস্তা না পাওয়াতে ওরা গুহার ভেতরে একটি ছোট টিলার উপর আটকে ছিল, তাও একদিন-দুদিন নয় — ১৮ দিন! কল্পনা করতে পারেন, মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ওই কিশোররা যখন এক-একটা মুহূর্ত কাটাচ্ছিল, তখন সেই সময়টা কেমন ছিল? এই পুরো অপারেশানটা কীভাবে চালানো হয় — প্রতিটি স্তরে সকলে যে দায়িত্ববোধের পরিচয় দিয়েছেন সেটা সত্যিই অভূতপূর্ব! ওখানকার সরকার, বাচ্চাদের পিতা-মাতা, পরিবারের লোকজন, গণমাধ্যম, দেশের নাগরিকবর্গ — প্রত্যেকে শান্তি ও ধৈর্যের এক অনুকরণীয় আচরণ করে দেখিয়েছে। সবাই দলবদ্ধ ভাবে এই মিশনে সামিল হয়েছে। প্রত্যেকের এই সংযত ব্যবহার — আমার মনে হয় এটা শেখার ও আত্মস্থ করার বিষয়। মা-বাবার দুঃখ হয়নি বা মা চোখের জল ফেলেননি তা কিন্তু নয়। প্রত্যেকের ধৈর্য, সংযম, পুরো সমাজের শান্ত ব্যবহার সত্যিই আমাদের জন্য শিক্ষামূলক বিষয়। এই অপারেশানে থাইল্যাণ্ডের নৌবাহিনীর এক সৈন্যকে প্রাণ দিতে হয়েছে। সমগ্র বিশ্ব আশ্চর্যান্বিত যে এইরকম বিপদসঙ্কুল পরিস্থিতি সত্ত্বেও উদ্ধারকারীরা জলমগ্ন অন্ধকার গুহাতে সাহস ও ধৈর্যের সঙ্গে কাজ করেছে, আশা ছাড়েনি। এই ঘটনা এটাই দেখায় যে যখন মানুষ জোটবদ্ধ হয়, তখন অনেক আশ্চর্য জিনিষ হয়। এটাই প্রয়োজন যে আমরা শান্ত মনে স্থির চিত্তে নিজেদের লক্ষ্যে মনোনিবেশ করি এবং তার জন্য কাজ করতে থাকি। কিছুদিন আগে আমাদের দেশের জনপ্রিয় কবি নীরজ প্রয়াত হয়েছেন। কবি নীরজের বৈশিষ্ট্য ছিল — আশা, ভরসা, দৃঢ় সংকল্প এবং আত্মবিশ্বাস। কবি নীরজের সব কথা আমাদের সকল ভারতবাসীকে অনেক শক্তি, প্রেরণা দিতে পারে। অন্ধকার দূর হবেই যতই তুফান উঠুক যতই বজ্রপাত হোক দীপ যখন জ্বলেছে তখন অন্ধকার দূর হবেই। কেননা এটাই হচ্ছে সেই সময় যখন কলেজগুলির জন্য ‘পিক সেশন’। ছাত্রদের মনযোগ ‘হোম’ থেকে ‘হোস্টেল’-এ চলে যায়। ছাত্ররা ‘পেরেন্ট’দের ছত্রছায়া থেকে ‘প্রফেসর’দের ছত্রছায়াতে প্রবেশ করে। আমার বিশ্বাস, আমার যুব বন্ধুরা কলেজ জীবনের শুভারম্ভকে নিয়ে খুবই উৎসাহিত এবং খুশি। প্রথমবার বাড়ির বাইরে বেরনো, গ্রামের বাইরে যাওয়া, এক সুরক্ষিত পরিবেশ থেকে বাইরে বেরিয়ে নিজেকে নিজের পথ প্রদর্শক হতে হয়। এতসব যুবক নিজের ঘর ছেড়ে জীবনকে এক নূতন পথে এগিয়ে নিয়ে যেতে বেরিয়ে পরে। যোধপুর AIIMS–এর MBBSপরীক্ষায় প্রথম চেষ্টাতেই সে পাশ করে গেছে। তার বাবা আজীবন আস্তাকুঁড়ের আবর্জনা কুড়িয়ে পরিবারের ভরণপোষণ করে এসেছেন। সেই পরিস্থিতিতে এই সাফল্যের জন্য আমি আশারামকে অভিনন্দন জানাই। এমন কত দুঃস্থ পরিবারের ছাত্র আছে যারা প্রতিকূল অবস্থার মধ্যেই নিজেদের পরিশ্রম আর মনযোগকে সম্বল করে এমন কিছু করে দেখিয়েছে, যা আমাদের সকলকে প্রেরণা যোগায়। নিজেদের আশেপাশে তাকালে আমরা এমন কত উদাহরণই পেয়ে যাব। দেশের যে কোনও প্রান্তের যে কোনও ভালো ঘটনা আমার মনকে শক্তি দেয়, প্রেরণা যোগায়। আর এই সব তরুণদের কথা আপনাদের বলতে গিয়ে আমার কবি নীরজের কথা মনে পড়ছে। ফুলের সুবাস দিয়ে জয় করতে হবে তলোয়ারকে, আমার প্রিয় দেশবাসী, কয়েক দিন আগে একটি খবর আমার চোখে পড়লো, যাতে লেখা ছিল — “মোদীর স্বপ্ন সফল করলেন দুই যুবক।” ভিতরের খবরটি পড়ার পর জানতে পারলাম আমাদের যুবশক্তি কীভাবে টেকনোলজি-র স্মার্ট এবং ক্রিয়েটিভ ইউজ-এর সাহায্যে সাধারণ মানুষের জীবনে পরিবর্তন আনার চেষ্টা করছে। আমি ‘ব্রেন-ড্রেন’-কে ‘ব্রেন-গেইন’-এ বদলে ফেলার অনুরোধ জানিয়েছিলাম। রায়বেরিলির দুই আই-টি প্রফেশনাল যোগেশ সাহুজী এবং রজনীশ বাজপেয়ীজী আমার এই চ্যালেঞ্জকে স্বীকার করে এক অভিনব চেষ্টা চালিয়েছেন। নিজেদের প্রফেশনাল স্কিলকে ব্যবহার করে যোগেশজী এবং রজনীশজী মিলে একটি ‘স্মার্ট গাঁও অ্যাপ’ তৈরি করেছেন। এই অ্যাপ শুধু যে গ্রামের লোকেদের গোটা দুনিয়ার সঙ্গে সংযুক্ত করবে তা-ই নয়, এখন তাঁরা যে কোনও তথ্য বা সংবাদ নিজেদের মোবাইলেই পেয়ে যাবেন। তৌধকপুর নামে রায়বেরিলির এই গ্রামটির গ্রাম-প্রধান, ডিস্ট্রিক্ট ম্যাজিস্ট্রেট, সি-ডি-ও সকলে মিলে এই অ্যাপটি ব্যবহার করার জন্য সাধারণ গ্রামবাসীকে উৎসাহ দিয়েছেন। এই অ্যাপ-এ গ্রামের টেলিফোন ডিরেক্টরি, নিউজ সেকশান, ইভেন্টস লিস্ট, হেলথ সেন্টার, নফরমেশন সেন্টার — সবই দেওয়া আছে। এই ঘটনাটিকে খতিয়ে দেখলে একটা ব্যাপার আপনাদের অবশ্যই মনে হবে যে এই তরুণেরা আমেরিকায় সেদেশের চলন-বলন, বিচার-বিবেচনার মধ্যে জীবন কাটাচ্ছেন, হয়ত বেশ কিছু বছর আগে দেশ ছেড়েছেন, কিন্তু তা সত্ত্বেও নিজের গ্রামের সূক্ষ্মাতিসূক্ষ্ম বিষয়গুলি জানেন, চ্যালেঞ্জগুলিকে বোঝেন এবং গ্রামের সঙ্গে ইমোশনালি যুক্ত রয়েছেন। এই কারণেই সম্ভবত তাঁরা গ্রামের যা প্রয়োজন, ঠিক সেই অনুসারে কিছু বানাতে পেরেছেন। নিজের গ্রাম, নিজের শিকড়ের সঙ্গে এই যোগ এবং নিজের দেশের জন্য কিছু করে দেখাবার এই মানসিকতা সব ভারতবাসীর মধ্যে স্বাভাবিক ভাবেই রয়েছে। আমরাও বরং একটু পরখ করে নিই, আমাদের ক্ষেত্রেও এরকম কিছু ঘটেনি তো — অবস্থান, পরিস্থিতি বা দূরত্ব আমাদেরও বিচ্ছিন্ন করে দেয়নি তো — কোনও আস্তরণ পড়ে যায়নি তো! সন্তোষজী, আপনার ফোনের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ! সত্যিই পণ্ঢরপুরের পুণ্যযাত্রা এক অদ্ভুত উৎসব। বন্ধুগণ, আষাঢ় মাসের একাদশী, যেটা এবছর ২৩-শে জুলাই তারিখে ছিল, এই দিনে পণ্ঢরপুরের পুণ্যযাত্রা জাঁকজমকের সঙ্গে পালিত হয়। পণ্ঢরপুর মহারাষ্ট্রের কোলাপুর জেলার পবিত্র শহর। আষাঢ় মাসের একাদশীর প্রায় ১৫-২০ দিন আগে থেকেই বারকরী অর্থাৎ তীর্থযাত্রীরা পালকি নিয়ে পণ্ঢরপুরের উদ্দেশ্যে পদযাত্রা শুরু করেন। এই যাত্রা, যাকে ‘বারী’ বলা হয়ে থাকে, এতে লক্ষ লক্ষ বারকরী যোগদান করেন। ভগবান বিট্‌ঠল, যাঁকে বিঠোবা বা পাণ্ডুরঙ্গ-ও বলা হয়, তাঁর দর্শনের জন্য ভক্তরা ওখানে পৌঁছন। ভগবান বিট্‌ঠল দরিদ্র, অসহায়, পীড়িতদের স্বার্থরক্ষা করেন। মহারাষ্ট্র, কর্ণাটক, গোয়া, অন্ধ্রপ্রদেশ, তেলেঙ্গানার লোকেদের অপার শ্রদ্ধা এবং ভক্তি রয়েছে এই ভগবানের প্রতি। আপনারা পণ্ঢরপুরের বিঠোবা মন্দিরে যান, ওখানকার মাহাত্ম্য, সৌন্দর্য, আধ্যাত্মিক আনন্দের এক আলাদা অনুভূতি রয়েছে। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের শ্রোতাদের আমার অনুরোধ, যদি সুযোগ আসে পণ্ঢরপুরের পুণ্যযাত্রার অভিজ্ঞতা অবশ্যই অর্জন করবেন। জ্ঞানেশ্বর, নামদেব, একনাথ, রামদাস, তুকারাম — এরকম অসংখ্য সন্ন্যাসী মহারাষ্ট্রে আজও সাধারণ মানুষকে শিক্ষা প্রদান করছেন। অন্ধ বিশ্বাসের বিরুদ্ধে শ্রদ্ধার সঙ্গে সমাজ লড়াই করতে পারে, এই মন্ত্র আমরা এঁদের কাছ থেকে পাই। ঠিক এরকমই এক মহাপুরুষ ছিলেন লোকমান্য তিলক, যিনি অনেক ভারতীয়ের মনে গভীর ছাপ ফেলেছেন। আমরা ২৩-শে জুলাই তিলকজীর জন্মজয়ন্তী, আর ১-লা আগষ্ট ওঁর প্রয়াণদিবসে তাঁকে ভক্তি ভরে স্মরণ করি। লোকমান্য তিলক সাহস আর আত্মবিশ্বাসে বলীয়ান ছিলেন। ব্রিটিশ শাসকদের ভুলভ্রান্তি দেখিয়ে দেওয়ার মতো ক্ষমতা ও বুদ্ধিমত্তা তাঁর ছিল। লোকমান্য তিলক এবং আমেদাবাদে তাঁর যে মূর্তি রয়েছে তা নিয়ে এক বিশেষ ঘটনার কথা আপনাদের আমি বলছি। ১৯১৬-র অক্টোবর মাসে লোকমান্য তিলকজী যখন আমেদাবাদে এসেছিলেন — ভাবুন, আজ থেকে ১০০ বছর আগে, তাঁকে স্বাগত জানাতে চল্লিশ হাজারেরও বেশি মানুষ জড়ো হয়েছিলেন। এই সময় সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের সঙ্গে লোকমান্য তিলকজীর দীর্ঘক্ষণ কথা বলার সুযোগ হয়েছিল এবং সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল লোকমান্য তিলকজীর দ্বারা অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছিলেন। ১-লা আগষ্ট, ১৯২০ লোকমান্য তিলকজীর মৃত্যু হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন আমেদাবাদে তাঁর স্মারক মূর্তি প্রতিষ্ঠা করতেই হবে। এরপর নগর কর্পোরেশনের মেয়র হয়েই বল্লভভাই প্যাটেল ব্রিটেনের মহারানীর নামাঙ্কিত ‘ভিক্টোরিয়া গার্ডেন’-এ মহামান্য তিলকের স্মারক প্রতিষ্ঠার সিদ্ধান্ত নেন। স্বাভাবিক ভাবেই ব্রিটিশ শাসক এই বিষয়ে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট হয় এবং সেখানকার কালেক্টর বার বার ‘স্মারু হেলা’ নামক স্মারক নির্মাণের প্রস্তাব নাকচ করে দিতে থাকেন। ইংরেজের কাছে এই লেখা ঈশ্বরের নির্দেশের মত শুনতে লেগেছিল। লোকমান্য তিলকের উদ্যোগেই প্রথম সার্বজনীন গণেশ উৎসব উদ্‌যাপন শুরু হয়েছিল। সার্বজনীন গণেশ উৎসব পরম্পরাগতভাবে শ্রদ্ধা ও আয়োজনে সমৃদ্ধ হয়ে উঠলেও একই সঙ্গে সমাজ জাগরণ, একতা, সমদর্শিতা এবং সাম্যের মানসিকতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটা প্রভাবশালী মাধ্যম হয়ে উঠেছিল। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এই উৎসবের জনপ্রিয়তা বাড়তে লাগল। এর থেকেই প্রমাণ হয় আমাদের প্রাচীন ঐতিহ্য এবং বীর নায়কদের প্রতি যুব সমাজের আজও craze আছে। আমি অবশ্যই জনগণকে আপনাদের কথা জানাবো। চন্দ্রশেখর আজাদের সাহসিকতা এবং স্বাধীনতার জন্য আকুলতা অনেক যুবককেই প্রেরণা জুগিয়েছিল। আজাদ নিজের জীবন বাজী রেখেছিলেন কিন্তু বিদেশী শাসনের সামনে কখনও মাথা নোয়াননি। এটা আমার সৌভাগ্য যে মধ্যপ্রদেশে চন্দ্রশেখর আজাদের গ্রাম অলীরাজপুর যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। আরও একবার ভারতমাতার দুই মহান সন্তান লোকমান্য তিলকজী এবং চন্দ্রশেখর আজাদজীকে শ্রদ্ধাপূর্ণ নমস্কার জানাচ্ছি। কিছুদিন আগে ফিনল্যাণ্ডে অনুষ্ঠিত জুনিয়র অনূর্ধ্ব কুড়ি বিশ্ব অ্যাথলেটিক্‌স চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটারের দৌড়ে ভারতের বাহাদুর কন্যা, কিষাণকন্যা হিমা দাস স্বর্ণপদক জিতে ইতিহাস সৃষ্টি করেছে। ই-মেলে একতা লিখছে — যে কোনও অ্যাথলিটের জীবনে মাহেন্দ্রক্ষণ সেটাই যখন সে তেরঙ্গা জড়িয়ে ধরে আর আমার গর্ব যে আমি তা করে দেখিয়েছি। একতা, আমাদের সবার আপনাকে নিয়ে গর্ব হয়। আপনি দেশের নাম উজ্জ্বল করেছেন। টিউনিশিয়ায় বিশ্ব প্যারা-অ্যাথলেটিক্স গ্রাঁ প্রি, ২০১৮-তে একতা স্বর্ণপদক ও ব্রোঞ্জ পদক জিতেছে। ওর এই সাফল্য উল্লেখযোগ্য এই কারণে, যে ও নিজের চ্যালেঞ্জকে সাফল্যের মাধ্যম বানিয়ে নিয়েছে। আমি একতা ভয়ানজী, যোগেশ কটুনিয়াজী, সুন্দর সিংজীকে তাঁদের সাহস ও সংগ্রামী মনোভাবের জন্য সেলাম জানাচ্ছি, অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি আপনাদের সকলের ভালো স্বাস্থ্যের জন্য, দেশভক্তির প্রেরণা জাগানো এই আগষ্ট মাসের জন্য এবং শতবর্ষ ধরে চলে আসা অনেক অনেক উৎসবের জন্য অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাচ্ছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ! প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ক্যাপ্টেন জয় নারায়ণ প্রসাদ নিশাদের প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “ক্যাপ্টেন জয় নারায়ণ প্রসাদ নিশাদজির প্রয়াণে আমি মর্মাহত। তিনি দেশের সেবায় নিয়োজিত ছিলেন। বিহারের উন্নয়নে ক্যাপ্টেন নিশাদের অবদান বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। দরিদ্রদের ক্ষমতায়নে তাঁর কাজ জনগণ সর্বদা মনে রাখবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার ১১ই ফেব্রুয়ারি উত্তর প্রদেশের বৃন্দাবনে শিশুদের মধ্যে খাদ্য বিতরণ করবেন। বৃন্দাবনের চন্দ্রোদয় মন্দিরে তিনি অক্ষয়পাত্র ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে থার্ড বিলিয়ন্থ খাবার বিতরণের বিষয়টি উদযাপনের অঙ্গ হিসাবে একটি ফলকের আবরণ উন্মোচন করবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী স্মার্ট সিটি চ্যালেঞ্জের বিজয়ীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক ট্যুইটার বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “স্মার্ট সিটি চ্যালেঞ্জের বিজয়ীদের অভিনন্দন। আমি এদের প্রত্যেককেই শুভেচ্ছা জানাই যাতে তারা এই প্রকল্প রূপায়ণে অগ্রণী ভূমিকা নিয়ে শহর ভারতের রূপান্তর ঘটাতে পারে। বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত এখন অর্থনীতি, পরিকাঠামো, যুব বিষয়ক ও অন্যান্য বহু ক্ষেত্রে এগিয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী সাতটি ‘সি’-এর ওপর ভিত্তি করে ভারতে ভবিষ্যৎ অগ্রগতির পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করেন। এই সাতটি ‘সি’ হ’ল – common বা অভিন্ন, connected বা সংযুক্ত, convenient বা উপযোগী, congestion free বা যানজট মুক্ত, charged বা বিদ্যুৎ শক্তি সঞ্চারিত করা, clean বা পরিচ্ছন্ন এবং cutting edge বা সর্বাধুনিক। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের অংশ নিম্নরূপ – সারা বিশ্বের বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ, গ্লোবাল মোবিলিটি শীর্ষ বৈঠকে আমি আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাই। মুভ – শীর্ষ বৈঠকের এই নামটি প্রকৃত অর্থেই বর্তমান ভারতের প্রাণচঞ্চলতাকে প্রতিফলিত করে। অবশ্যই ভারত এখন এগিয়ে চলেছে : আমাদের অর্থনীতি এগিয়ে চলেছে। আমরা এখন বিশ্বের দ্রুততম বিকাশশীল প্রধান অর্থনীতি। আমাদের শহর ও নগরগুলিও এগিয়ে চলেছে। আমরা ১০০টি স্মার্টসিটি নির্মাণ করছি। আমাদের পরিকাঠামো এগিয়ে চলেছে। আমরা অত্যন্ত দ্রুতগতিতে সড়ক, বিমানবন্দ্র, রেল লাইন ও বন্দর নির্মাণ করছি। আমাদের পণ্য সরবরাহ ক্ষেত্রও এগিয়ে চলেছে। অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর সরবরাহ ব্যবস্থাকে যুক্তিসঙ্গত এবং পণ্যাগার নেটওয়ার্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করেছে। আমাদের সংস্কার প্রক্রিয়া এগিয়ে চলেছে। আমরা ভারতকে সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার অনুকূল গন্তব্য হিসাবে গড়ে তুলেছি। আমাদের জীবনযাত্রা এগিয়ে চলেছে। পরিবারগুলি এখন নিজস্ব বাড়ি, শৌচালায়, ধোঁয়ামুক্ত রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডার, ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট ও ঋণের সুবিধা পাচ্ছে। আমাদের যুবসম্প্রদায়ও এগিয়ে চলেছে। বিশ্বের স্টার্টআপ হাব বা নতুন শিল্প স্থাপনের কেন্দ্র হিসাবে আমাদের দ্রুত উত্থান ঘটছে। ভারত এখন নতুন শক্তি, চাহিদা ও উদ্দেশ্য নিয়ে এগিয়ে চলেছে। আমরা সকলেই জানি যে, মানবতার অগ্রগতিরমূলে রয়েছে গতিময়তা। সমগ্র বিশ্ব এখন গতিময়তার এক নতুন নবজাগরণের মধ্যভাগে রয়েছে। তাই, গতিময়তার বিষয়টিকে আরও বড় আঙ্গিকে দেখা প্রয়োজন। গতিময়তা হ’ল অর্থনীতির মূল চালিকাশক্তি। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য কর্মসংস্থান সৃষ্টিতেও গতির সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন শিল্প সংস্থা বড় ভূমিকা নিতে পারে। নগরায়নের কেন্দ্রেও রয়েছে গতিময়তা। মনুষ্যচালিত যানবাহনের জন্য ক্রমবর্ধমান সড়ক, পার্কিং ও ট্র্যাফিক পরিকাঠামোর প্রয়োজন। আমাদের গ্রহের সংরক্ষণের জন্যও গতিময়তার প্রয়োজন। বর্তমানে এমন এক অনুকূল গতিময় ব্যবস্থা গড়ে তোলা প্রয়োজন, যা প্রকৃতির সঙ্গে সামঞ্জস্য বজায় রেখে সময়ের চাহিদা পূরণ করবে। জলবায়ুর পরিবর্তনের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গতিময়তাকে ব্যবহার করতে হবে। আমরা মহাসড়ক নির্মাণের গতি দ্বিগুণ করেছি। গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ পরিকল্পনায় পুনরুজ্জীবন ঘটানো হয়েছে। আমরা জ্বালানি সাশ্রয় ও পরিশ্রুত জ্বালানির সাহায্যে যানবাহন চালানোর ওপর জোর দিচ্ছি। দেশের যেখানে বিমান পরিষেবা ছিল না, সেখানে আমরা কম খরচে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিসাধন করেছি। নতুন ১০০টি আকাশপথে বিমান পরিষেবা চালু করছি। রেল ও সড়কের মতো চিরাচরিত পদ্ধতির পাশাপাশি আমরা জলপথ ব্যবস্থার ওপর গুরুত্ব দিচ্ছি। উপযুক্ত জায়গায় আমরা বাড়ি, বিদ্যালয় ও কার্যালয় নির্মাণ করে শহরগুলিতে সফরের সময় সাশ্রয় করছি। যানজত এড়াতে আধুনিক যানবাহন পরিচালনা ব্যবস্থার মতো তথ্য নির্ভর পদক্ষেপ গ্রহণের প্রয়াস আমরা নিয়েছি। দ্রুত পরিবর্তনশীল ও গতির এই যুগে ভারতের নিজস্ব কিছু শক্তি ও তুলনামূলক সুবিধা রয়েছে। আমাদের নতুনভাবে যাত্রা সূচনা করতে হবে। সম্পদচালিত গতিময়তার সৌভাগ্য আমাদের খুব কম। এটি আমাদের এক নতুন সমস্যামুক্ত অনুকূল গতিময়তার সুযোগ গড়ে তুলতে সুবিধা করে দিয়েছে। আমাদের অভিনব পরিচিতি ব্যবস্থা ‘আধার’ – এক সুসংবদ্ধ সরকারি ডিজিটাল পরিকাঠামো গড়ে তুলেছে। অভিনব এই ব্যবস্থা ৮৫ কোটি মানুষকে ডিজিটাল দিক থেকে অধিকার প্রদান করেছে। ভারত দেখাতে পারে যে, কিভাবে এ ধরণের ডিজিটাল পরিকাঠামোকে গতিময়তার নতুন বাণিজ্যিক মডেলের সঙ্গে যুক্ত করা যায়। আমাদের পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তির মাধ্যমে বৈদ্যুতিক গতিময়তার পরিবেশগত উপকারিতাগুলিকে কিভাবে বাস্তবায়িত করা যায়, তার ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে। পুনর্নবীকরণযোগ্য ক্ষেত্রে আমরা ২০২২ নাগাদ ১৭৫ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের পরিকল্পনা নিয়েছি। আমরা এখন বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম সৌরশক্তি উৎপাদক দেশ। পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের দিক থেকে আমাদের স্থান এখন ষষ্ঠ। আন্তর্জাতিক সৌর জোটের মাধ্যমে সৌরশক্তি ক্ষেত্রে এখন অগ্রণী ভূমিকা নিয়েছি। আমাদের উৎপাদন ভিত্তি, বিশেষ করে মোটর গাড়ি ক্ষেত্রে দ্রুত অগ্রগতি হচ্ছে। আমাদের এক বিপুল সংখ্যক ডিজিটাল-শিক্ষিত যুবসম্প্রদায় রয়েছে। common বা অভিন্ন – গণপরিবহণ ব্যবস্থা আমাদের গতিময়তার অত্যন্ত প্রয়োজনীয় অঙ্গ হয়ে উঠবে। আমাদের বড় মোটর গাড়ির পাশাপাশি স্কুটার ও রিক্‌শার মতো যানবাহনেও গুরুত্ব দিতে হবে। উন্নয়নশীল বিশ্বের একটা বড় অংশই গতিময়তার জন্য এ ধরণের যানবাহনের ওপর নির্ভর করে। এই ব্যবস্থার সকলেই নিতে পারেন। ব্যক্তিগত যানবাহনে সফরের পরিবর্তে গণপরিবহণ ব্যবস্থার সুবিধা সকলে যাতে নিতে পারেন, তা আমাদের সুনিশ্চিত করতে হবে। congestion freeবা যানজট মুক্তগতিময়তা অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে ব্যয় হ্রাস করার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাই, অর্থনৈতিক ও পরিবেশগত ক্ষেত্রে যে সকল সমস্যা রয়েছে, তা দূর করার ওপর জোর দিতে হবে। এই নীতির ফলে সকলেই সমান লাভবান হবেন এবং মোটর গাড়ি শিল্পে এক বিরাট সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি হবে। শিল্পোদ্যোগীরা গতিময়তাকে উদ্ভাবন ও বিকাশের এক বিপুল সুযোগ সৃষ্টির ক্ষেত্র হিসাবে বিবেচনা করবেন। এটি এমন একটি ক্ষেত্র হয়ে উঠতে চলেছে, যেখানে উদ্ভাবন জনস্বার্থে বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে সাহায্য করবে। আমি দৃঢ় বিশ্বাসী যে, গতিময়তার বিপ্লব আমাদের অগ্রগতি ও বিকাশের সহায়ক হয়ে উঠবে। ভারত যখন উন্নয়নের গতি ত্বরান্বিত করবে এক-পঞ্চমাংশ মানুষ এ থেকে উপকৃত হবেন। এমনকি, ভারতের এই সাফল্য অন্যদের অনুসরণ করতে উৎসাহিত করবে। এটিই আমাদের ভবিষ্যৎ। আমরা সকলেই পরিপুষ্ট হব আরও উৎসাহ নিয়ে আমরা একসঙ্গে কাজ করব আমাদের বুদ্ধি আরও ক্ষুরধার হবে। আমরা একত্রে কি করতে পারি, তা উপলব্ধি করার ব্যাপারে আমি অত্যন্ত আশাবাদী। এই শীর্ষ বৈঠক সবেমাত্র শুরু হ’ল। এটি আরও এগিয়ে চলুক। অনেক অনেক ধন্যবাদ। জনসমাবেশে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত অনন্য ঐতিহ্যে সমৃদ্ধ এক দেশ, যেখানে ভিন্ন ধরণের মতাদর্শ ও চিন্তাভাবনা সর্বদাই মানবতাবাদের কল্যাণে এসেছে। তিনি বলেন, ভগবান বুদ্ধের উপদেশ বেশ কিছু দেশ নির্মাণেও কাজে লেগেছে। ভারত কখনও আগ্রাসী দেশ হয়ে ওঠেনি বলেও তিনি মন্তব্য করেন। ভগবান বুদ্ধের দেওয়া আটটি ধর্মসংঘ দর্শনের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আজ আমরা যে সব সমস্যার সম্মুখীন, তা ঐ দর্শন অনুসণেরমাধ্যমে সমাধান সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, ভগবান বুদ্ধের ভালোবাসা ও করুণার বার্তা বর্তমান বিশ্বের পক্ষে বিশেষ উপযোগী। এ প্রসঙ্গে তিনি জোর দিয়ে বলেন, ভগবান বুদ্ধের প্রতি যাঁদের বিশ্বাস রয়েছে, বিশ্ব মানবতার স্বার্থে তাঁদের সকলেরই একজোট হওয়া দরকার। ভগবান বুদ্ধের দেখানো পথ অনুসরণ করে সহমর্মিতার সঙ্গে সরকার মানুষের সেবা করে চলেছে বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। ভারতের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগুলি সংরক্ষণে কেন্দ্রীয় সরকার এক ব্যাপক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে কাজ করছে, যার মধ্যে ভগবান বুদ্ধের সঙ্গে জড়িত ঐতিহ্যগুলিও রয়েছে। তিনি জানান, বুদ্ধ সার্কিটের সার্বিক উন্নয়নের জন্য ৩৬০ কোটি টাকা অনুমোদন করা হয়েছে। স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে, ২০২২-এর মধ্যে এক নতুন ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে জনসমাবেশে উপস্থিত সকলকে তিনি অবদান রাখার আহ্বান জানান। নয়া দিল্লি: ৩০ সেপ্টেম্বর: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শনিবার দিল্লির লাল কেল্লার সংলগ্ন মাধব দাসপার্কে দশেরা উত্সবে যোগ দিলেন| তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী ২০২২ সালে দেশ যখনস্বাধীনতার ৭৫ বর্ষ উদযাপন করবে, তার মধ্যে দেশের জন্য কোনো ইতিবাচক অবদান রাখার‘সংকল্প’ গ্রহণ করতে অনুপ্রাণিত করেন| প্রধানমন্ত্রী বলেন, “ভারতের পার্বণগুলো শুধুমাত্রকোনো উত্সব অনুষ্ঠান নয়, এগুলো সমাজকে শেখানোরও এক মাধ্যম| এই পার্বণগুলো আমাদেরকেসমাজের মূল্য সম্পর্কে সচেনত করে| আমাদেরকে এক সম্প্রদায় হিসেবে একসঙ্গে বসবাসকরার শিক্ষা প্রদান করে|” দূরদ্রষ্টা মহাপুরুষ কেন হন এবং কিভাবে তাঁর দূরদৃষ্টি প্রসারিত হয়? এহেন সামর্থ্যবান, সমর্পিত মানুষের জীবনের শৃঙ্খলাবোধ, কেমন শিক্ষা এবং সংস্কারের মাধ্যমে বাস্তবায়িত করতে তিনি এই বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বপ্ন দেখেছেন। তাদের বাণিজ্য যাদের মাধ্যমে সুদূর প্রসারিত হবে তেমন শিক্ষার্থীই তারা গড়ে তুলতে চাইছিলেন। কিন্তু মদনমোহনজী চাইছিলেন ছাত্রদের মনে ভারতের মহান পরম্পরা সঞ্জীবিত করে এমন রাষ্ট্র নির্মাণকারী গড়ে তুলতে যাঁরা সংস্কারের ধারাকে এগিয়ে নিয়ে যাবেন। দু’জনেই দেশের জন্য কিছু করতে নতুন প্রজন্মের মানুষ গড়ে তুলতে চাইছিলেন। ভারতে অনেক শতাব্দীকাল ধরে যোগাভ্যাসের পরম্পরা রয়েছে। সাধারণ মানুষও ব্যক্তিগতভাবে যোগাভ্যাসে আকর্ষিত হয়েছেন। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যোগকে জানার আগ্রহ দেখেছি। আমাদের যোগে সেই ক্ষমতা রয়েছে যা বিশ্বকে আমাদের সঙ্গে যুক্ত করতে পারে, আপন করে নিতে পারে। গত বছর আমার প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে রাষ্ট্রসংঘ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস ঘোষণা করেছে। বিশ্বের ১৯২টি দেশের মানুষ এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে। আমাদের যা আছে, তা নিয়ে যদি আমরা গর্ববোধ করতে পারি, তা হলে বিশ্ববাসীও আমাদের সঙ্গে পা মিলিয়ে চলতে, আমাদের অনুসরণ করতে তৈরি থাকেন। এই বিশ্বাস জ্ঞানের অধিষ্ঠানে সঞ্জীবিত থাকলে, প্রত্যেক ভাবনা ও দর্শনকে আলোচনা-সমালোচনার কষ্টিপাথরে যাচাই হতে থাকলে এর স্বীকৃতি আরও বৃদ্ধি পায়। বি এইচ ইউ’র মাধ্যমে এই প্রয়াস নিরন্তর জারি রয়েছে। আজ এখানে যে ছাত্রদের সম্মান জানানোর সুযোগ পেয়েছি, তাদের সকলকে এবং তাদের পরিবারের সদস্যদের আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। জীবনে সাফল্য পেতে হলে পরিবর্তিত যুগের সঙ্গে নিজেকে মানিয়ে চলার প্রাথমিক শর্ত হল – আমাদের অন্তরের শিক্ষার্থী যেন কখনও মুষড়ে না পরে, কখনও মারা না যায়। তা হলেই আমরা এই বিশাল জগতের এক বিরাট ব্যবস্থার সংখ্য মাত্রাসমূহ অর্জন করতে পারবো। এই সমাবর্তনের পর আমাদের সামনে বিশাল বিশ্ব উন্মুক্ত। এটা সামান্য সূত্রপাত নয়। যতদিন ছাত্র ছিলেন, মা-বাবা আত্মীয় পরিজন সকলেই পিঠ চাপড়াতেন, ভালো করে পড়াশুনা করো, এগিয়ে যাও! কিন্তু এখনশংসাপত্র হাতে পেতেই প্রশ্ন উঠবে, এখন কী করবে? দেশ ও দুনিয়ার সামনে অনেক সমস্যা রয়ে ছে। সেসব সমস্যার সামনে ভারত কোন্‌ ভূমিকা পালন করতে পারে? আমাদের এই বিশ্ববিদ্যালয়, আমাদের ছাত্রছাত্রীরা আগামী যুগে মানবজাতিকে, বিশ্বকে, কিছু দেওয়ার স্বপ্ন কেন দেখবো না? আমরা বৃক্ষে পরমাত্মা দেখি, নদীকে মা ভাবি। আমরা প্রকৃতিকে শোষণ করা অপরাধ বলে মনে করি, আমরা প্রকৃতি দোহনে বিশ্বাস করি। আপনাদের মধ্যে থেকে কি নতুন কোনও আবিষ্কর্তা বৈজ্ঞানিক হয়ে উঠবেন, যিনি এই প্রকৃতিকে যথাযথভাবে দোহনের মাধ্যমে শোষণমুক্ত করতে পারবেন? আমরা এক্ষেত্রে বিশ্বের অন্যান্য রাষ্ট্রের তুলনায় এগিয়ে থাকবো না কেন? পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিকে কিভাবে সুলভ করা যায়, সৌরশক্তিকে কিভাবে সুলভ করা যায়, তাঁর স্থায়ী সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। দ্বিতীয়ত, বিশ্বের যতগুলি দেশে বছরে ৩০০ দিনের বেশি সূর্যালোক দেখা যায়, সেগুলির সংগঠন গড়ে তুলেছি। অনেক অনেক ধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ সোমবার (২৮ মে) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সারা দেশের ‘উজ্জ্বলা যোজনা’র সুবিধাভোগীদের সঙ্গে কথাবার্তা বলেন। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতার জন্য সারা দেশ জুড়ে ৬০০টিরও বেশি কেন্দ্রের প্রত্যেকটিতে তিন জন করে উপভোক্তা উপস্থিত ছিলেন। প্রায় ১০ লক্ষ মানুষ এই আলাপচারিতা পর্বটি নরেন্দ্র মোদী অ্যাপ, বিভিন্ন টিভির সংবাদ চ্যানেল ও অন্যান্য সোশ্যাল মিডিয়ার মাধ্যমে দেখেছেন। উজ্জ্বলা যোজনার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে আলাপচারিতায় সন্তোষ প্রকাশ করে এবং প্রযুক্তির মাধ্যমে তাঁদের অভিজ্ঞতা ভাগ করে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচিটি অগ্রগতির প্রতীক হয়ে উঠেছে। ‘উজ্জ্বলা যোজনা’র মাধ্যমে প্রায় ৪ কোটি গ্রামীণ মহিলা রান্নার গ্যাস সংযোগ পেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে বিষাক্ত ধোঁয়া থেকে মুক্তি ও দূষণমুক্ত জ্বালানি যোগানের দিক থেকে ‘উজ্জ্বলা যোজনা’ কার্যকর হয়েছে। রান্নার সময় হ্রাস পাওয়ার ফলে মহিলাদের সামনে এখন অতিরিক্ত উপার্জনের ভালো সুযোগ এসেছে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নয়াদিল্লির ইন্দিরা গান্ধী ইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রথম ‘খেলোইন্ডিয়া স্কুল গেম্‌স’-এর আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন। এই উপলক্ষেআয়োজিত এক সমাবেশে ভাষণদানকালে তিনি বলেন যে খেলাধূলার বিষয়টি দেশের তরুণ ওযুবসমাজের জীবনের কেন্দ্রবিন্দুতে থাকা উচিৎ। কারণ, খেলাধূলা একইসঙ্গে ব্যক্তিত্ববিকাশের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যমও বটে। হাজারোব্যস্ততার মধ্যেও খেলাধূলার জন্য সময় বের করে নিতে তিনি উদ্বুদ্ধ করেন তরুণ ওযুবসমাজকে। একটি নবীন জাতি হিসেবে বরং খেলাধূলাতেআমরা অনেক বেশি উৎকর্ষ লাভ করতে পারি। আন্তর্জাতিকমঞ্চে ভারতের যেভাবে ক্রমউত্থান ঘটছে তার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর অর্থএই নয় যে বলিষ্ঠ অর্থনীতি এবং সেনাশক্তির জোরেই কোন দেশ এইভাবে উন্নতি করতে পারে। এজন্যপ্রয়োজন বিজ্ঞান, শিল্পকলা, ক্রীড়া ইত্যাদি ক্ষেত্রে দেশের জনসাধারণের ব্যুৎপত্তিলাভের মাধ্যমে বিশিষ্টতা অর্জন করা। ভারতের যুবসমাজের ওপর তাঁর গভীর আস্থা ব্যক্তকরে শ্রী মোদী বলেন যে তাঁরা এক সময় সাফল্যের এক নতুন শিখরে আরোহণ করবে। খেলাধূলাকে সারা দেশে জনপ্রিয় করে তুলতে সম্ভাব্য সকলরকমভাবেই প্রচেষ্টাচালিয়ে যেতে আমরা আগ্রহী। শ্রী মোদীতাঁর ভাষণে আরও বলেন, দেশের গ্রাম ও ছোট শহরগুলির তরুণ ও যুবকদের মধ্যে যেভাবেক্রীড়াবিদ হয়ে ওঠার সম্ভাবনা দেখা দিয়েছে, তা নিঃসন্দেহে আমাদের পক্ষে এক বিশেষআনন্দের বিষয়। এই তরুণ ও যুবকদের প্রয়োজন উৎসাহ ও সমর্থন যা যুগিয়ে যেতে আমারসরকার খুবই আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রীবলেন, খেলাধূলার প্রতি ভালোবাসা মানুষের একটি ব্যক্তিগত আবেগের স্বতঃস্ফূর্ত বহিঃপ্রকাশ।অর্থ লাভ এর প্রকৃত উদ্দেশ্য নয়। এই কারণেই কোন ক্রীড়াবিদ সবসময়ই আমাদের কাছে একবিশেষ জন। বৃহস্পতিবার মধ্যপ্রদেশের সেহরে কিষাণ কল্যাণ মেলায় ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার কাজ শুরু হয়ে যাবে আসন্ন খরিফ মরশুম থেকেই। এই প্রকল্পের আওতায় বিমাকৃত অর্থের পুরোটাই শস্যহানির ক্ষেত্রে ফেরৎ পাবেন কৃষকরা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ‘ইন্টারন্যাশনাল সিভিল অ্যাভিয়েশন অর্গানাইজেশন’ (আই সি এ ও)-এর গুণমান ও সুপারিশকৃত চর্চা সমূহের প্রতি উৎসাহ দান ও রপায়ন করার জন্য ‘কারিগরিগত সহযোগিতা কর্মসূচি’ রূপায়িত করতে ‘ডিরেক্টরেট জেনারেল অব সিভিল অ্যাভিয়েশন অব ইন্ডিয়া’ (ডি জি সি এ) এবং ফ্রান্সের ‘ফ্রেঞ্চ সিভিল আভিয়েশন অথরিটি- ডিরেক্‌স জেনারেল দ্য ল’ অ্যাভিয়েসঁ সিভিল’ (ডি জি এ সি)-এর মধ্যে একটি অনুমোদন-উত্তর ‘সমঝোতা পত্র’ (মউ)সাক্ষর মঞ্জুর করেছে। দুই দেশের সরকারের দ্বারা অনুমোদিত হওয়ার পর উভয় দেশের তরফে মউ-এ সাক্ষর করা হয় এবং চার বছরের জন্য এর মেয়াদ থাকবে। এই কারিগরিগত সহযোগিতা কর্মসূচিটি মাধ্যমে ডি জি সি এ-র আধিকারিকরা দক্ষতা ও বিশেষজ্ঞতা বাড়ানোর ক্ষেত্রে উপকৃত হবে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার কোচি মেট্রোর উদ্বোধনের পর নতুন মেট্রোতে কিছক্ষণ সফরওকরেন। কোচি মেট্রোকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করার এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীতাঁর ভাষণে বলেন : “কোচিমেট্রোর উদ্বোধন অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। গৌরবের এইমুহূর্তে আমার অভিনন্দন সকল কোচিবাসীকে। আরব সাগরেররানী কোচি হল মশলার এক গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্য কেন্দ্র। বর্তমানে এটি পরিচিতি লাভকরেছে কেরলের বাণিজ্যিক কেন্দ্র হিসেবে। কেরলে আগত দেশ-বিদেশের পর্যটকদের সংখ্যার নিরিখেকোচির স্থান রয়েছে প্রথমেই। এই কারণে কোচি শহরটিরও যে মেট্রো রেলের সুযোগ-সুবিধাথাকা প্রয়োজন, একথা খুবই যুক্তিসঙ্গত। এই শহরেরজনসংখ্যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে যা কিনা, আগামী ২০২১ সালের মধ্যে গিয়েপৌঁছবে ২৩ লক্ষে। এই কারণে নাগরিক পরিকাঠামোর ওপর ক্রমবর্ধমান চাপের সামাল দিতেএকটি দ্রুত গণ-পরিবহণ মাধ্যম গড়ে তোলা একান্ত জরুরি । কোচির অর্থনৈতিক অগ্রগতির ক্ষেত্রেও তাবিশেষ সহায়ক হবে। কোচি মেট্রোরেল প্রকল্পটি হল কেন্দ্র ও কেরল সরকারের সম-অংশীদারিত্বের ভিত্তিতে একটি যৌথউদ্যোগ। কোচি মেট্রোর জন্য কেন্দ্রীয় সরকার এ পর্যন্ত মঞ্জুর করেছে ২ হাজার কোটিটাকারও বেশি। আজ যে অংশটির উদ্বোধন হচ্ছে, তা মেট্রোপথে যুক্ত করবে আলুভা ওপালাড়িভাত্তমকে। এই অংশে ১৩.২৬ কিলোমিটার দূরত্বের মধ্যে রয়েছে ১১টি স্টেশন। আবার, এইমেট্রো প্রকল্পটির রয়েছে কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যও। এটিই হলদেশের প্রথম মেট্রো প্রকল্প যাতে যুক্ত রয়েছে ‘যোগাযোগ ব্যবস্থা-ভিত্তিক ট্রেননিয়ন্ত্রণ সিগন্যাল ব্যবস্থা’র মতো একটি আধুনিক সিগন্যাল পদ্ধতি। এরকামরাগুলির মধ্যে প্রতিফলন ঘটেছে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির চিন্তাভাবনা।কামরাগুলির রূপকার ফ্রান্সের আলস্টম। শহরেরসার্বিক জন-পরিবহণ নেটওয়ার্ককে একটিমাত্র ব্যবস্থার সঙ্গে সংযুক্ত করেছে কোচিমেট্রো। এই ব্যবস্থায় রয়েছে একটি সাধারণ সময় সারণী, সাধারণ টিকিট বুকিং ব্যবস্থাএবং কেন্দ্রীয়ভাবে পরিচালিত ‘কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল’ পদ্ধতি। শহরের শেষপ্রান্তটিকেও মেট্রো ব্যবস্থায় যুক্ত করার পাশাপাশি, শহরের মধ্যে ‘নন-মোটরাইজ্‌ড’পরিবহণ ব্যবস্থা গড়ে তোলারও চিন্তাভাবনা রয়েছে এর মধ্যে। সরকারি ওবেসরকারি অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে টিকিটের ভাড়া সংগ্রহের জন্য ভারতীয় ব্যাঙ্ক এবংআর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলিকে যুক্ত করার ক্ষেত্রেও কোচি মেট্রো এক উদ্ভাবনমূলকপদক্ষেপের দিশারী। স্বয়ংক্রিয় ভাড়া সংগ্রহ ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে বরাতপ্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হচ্ছে বিভিন্ন ব্যাঙ্ক ও আর্থিক সংস্থাগুলিকে।নির্বাচিত ব্যাঙ্কগুলি কোচি মেট্রোর সঙ্গে মিলিতভাবে নিজেদের নাম সম্বলিত ফেয়ারকার্ড ও অ্যাপ চালু করতে পারবে। এই কোচিআই-কার্ড হল বহু উদ্দেশ্যসাধক একটি প্রি-পেড রুপে কার্ড যা দিয়ে মেট্রো রেলে সফরকরার পাশাপাশি, সাধারণ ডেবিট কার্ড হিসেবেও তা ব্যবহার করা যাবে। ‘কোচিআই-মোবাইল অ্যাপ’ উদ্ভাবন করা হয়েছে এক সুদূরপ্রসারী চিন্তাভাবনা নিয়ে। মোবাইলঅ্যাপটির সঙ্গে যুক্ত রয়েছে একটি ইলেক্ট্রনিক ওয়ালেট যা আবার সংযুক্ত কোচিআই-কার্ড-এর সঙ্গে। সূচনায় এর সাহায্যে কোচির নাগরিকরা মেট্রো পরিষেবার সুযোগগ্রহণ করতে পারবেন। সুতরাং, এটি হলনিঃসন্দেহে বৈদ্যুতিন প্রশাসন তথা পরিচালন ব্যবস্থার ক্ষেত্রে ডিজিটাল মঞ্চের একভালো উদাহরণ। এই প্রকল্পের আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হল এই যে, প্রায় ১ হাজার মহিলাএবং ২৩ জন রূপান্তরকামীকে কোচি মেট্রো রেল ব্যবস্থার কাজের জন্য নির্বাচিত করাহয়েছে। পরিবেশ-বান্ধবপ্রকল্পের একটি দৃষ্টান্তই হল কোচি মেট্রো রেল। এটি চালানোর লক্ষ্যে মোট জ্বালানিচাহিদার প্রায় ২৫ শতাংশই যোগান দেবে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির উৎসগুলি, বিশেষতসৌরশক্তি তথা সৌর জ্বালানি। এই প্রকল্পের একটি দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হল কার্বননির্গমনের মাত্রা পুরোপুরিভাবে শূন্যে নিয়ে এসে নাগরিক পরিবহণ ব্যবস্থা বাস্তবায়িতকরা। এই মেট্রো প্রকল্পের প্রতিটি ষষ্ঠ স্তম্ভ সাজানো হবে একটি করে উদ্যান দিয়ে।শহরাঞ্চলের কঠিন বর্জ্য ব্যবহারের মাধ্যমে এই ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে। দেশেরসার্বিক পরিকাঠামোর বিকাশে গত তিন বছরে আমার সরকার বেশ কিছু বিষয়ের ওপর বিশেষভাবে দৃষ্টিদিয়েছে। রেল, সড়ক ও বিদ্যুৎ রয়েছে আমাদের অগ্রাধিকারের তালিকায়। ‘প্রগতি’র মঞ্চেঅনুষ্ঠিত বৈঠকগুলিতে আমি ব্যক্তিগতভাবে পর্যালোচনা করেছি ৮ লক্ষ কোটি টাকারও বেশিবিনিয়োগের প্রায় ১৭৫টি প্রকল্প। এই ক্ষেত্রগুলিতে প্রতিবন্ধকতা দূর করে রূপায়ণের গড়কেওআমরা যথেষ্ট উন্নত করে তুলেছি। বর্তমানে আমাদের লক্ষ্য হল পরবর্তী প্রজন্মেরউপযোগী এক পরিকাঠামো ব্যবস্থা গড়ে তোলা, যার মধ্যে রয়েছে লজিস্টিক্স, ডিজিটালপদ্ধতি এবং গ্যাস। দেশেরশহরগুলিতে জন-পরিবহণ ব্যবস্থার প্রসারে বেশ কিছু উদ্যোগও গ্রহণ করেছি আমরা। বিদেশিবিনিয়োগকেও এজন্য আমন্ত্রণ জানানো হয়েছে । ভারতের ৫০টি শহর এখন প্রস্তুত মেট্রো রেল প্রকল্প রূপায়ণের জন্য। মেট্রো রেলব্যবস্থার আর্থ-সামাজিক সুফলগুলি আজ আর কারোরই অজানা নয়। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতেনীতি প্রণয়নের বিষয়টিকে আমরা আরও গতিশীল করে তুলেছি। সাম্প্রতিককালে, মেট্রো রেলেররোলিং স্টক এবং সিগন্যাল ব্যবস্থার সুনির্দিষ্ট মান সম্পর্কিত খুঁটিনাটিবিষয়গুলিকেও বেঁধে দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এর ফলে, এক দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েউৎপাদক ও নির্মাতারা ভারতে তাঁদের নির্মাণ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধার প্রসারেবিশেষভাবে উৎসাহিত হবেন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি অনুসরণে মেট্রো রোলিং স্টকেরঅন্তর্দেশীয় নির্মাণ ও উৎপাদনকে উৎসাহদানের চেষ্টা করা হচ্ছে। এই লক্ষ্যে ২০১৭-রএপ্রিল মাসে কেন্দ্রীয় সরকার প্রকাশ করেছে ‘জাতীয় পরিবহণ-কেন্দ্রিক বিকাশ নীতি’।এই নীতির উদ্দেশ্য হল দেশের শহরগুলির রূপান্তর ঘটানো। এর ফলে, সমগ্র ব্যবস্থাটিপরিবহণ-নির্ভরশীল না থেকে বরং পরিবহণ-কেন্দ্রিক হয়ে উঠবে। মূল লক্ষ্য হল, বিভিন্নজনগোষ্ঠী এবং সরকারি পরিবহণ ব্যবস্থার মধ্যে নিবিড় যোগসূত্র গড়ে তোলা। সুনির্দিষ্টমূল্যমান-ভিত্তিক আর্থিক নীতির কাঠামো রচনার জন্য ভেঙ্কাইয়াজির নেতৃত্বাধীনকেন্দ্রীয় নগর পরিবহণ মন্ত্রককে আমি সাধুবাদ জানাই। জমির বর্ধিত মূল্যমানকে কাজেলাগানোর এ এক বিশেষ প্রক্রিয়া। কোচি শহরেরনাগরিকবৃন্দ, কোচি মেট্রো রেল নিগম এবং কেরলের মুখ্যমন্ত্রীকে এই গুরুত্বপূর্ণমাইলফলক স্থাপনের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে আমি আমার বক্তব্য শেষ করব। ২০১৬-রজানুয়ারিতে আয়োজিত চ্যালেঞ্জ প্রক্রিয়ার প্রথম রাউন্ডেই স্মার্ট নগরীর আখ্যাপেয়েছে কোচি। আমি আশাবাদী যে আগামী দিনগুলিতে এই শহর আরও উন্নততর লক্ষ্যে এগিয়েযেতে পারবে। এই তিন দেশের সঙ্গেই ভারতের মজবুত কৌশলগত অংশীদ্বারিত্ব রয়েছে। ইন্দোনেশিয়ার রাষ্ট্রপতি জোকো উইডোডো-র আমন্ত্রনে তিনি আগামী ২৯ মে জাকার্তায় থাকবেন। প্রধানমন্ত্রী হিসেবে এটাই তাঁর প্রথম সেদেশ সফর। ইন্দোনেশিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয়দের উদ্দেশেও তিনি ভাষন দেবেন। আগামী ৩১ মে সিঙ্গাপুরে পৌঁছানোর আগে তিনি সংক্ষিপ্ত সফরে মালয়েশিয়ায় গিয়ে সেদেশের নতুন নেতৃবৃন্দকে অভিনন্দন জানাবেন। সেদেশের প্রধানমন্ত্রী ডঃ মহাথির মহম্মদ-এর সঙ্গে বৈঠকের ব্যাপারে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। সিঙ্গাপুরে পৌঁছে তিনি দুই দেশের মধ্যে দক্ষতা উন্নয়ন, নগর-পরিকল্পনা ও কৃত্রিম বুদ্ধিমতা সহ অন্যান্য কয়েকটি ক্ষেত্রে সহযোগিতা বাড়ানোর ওপর জোর দেবেন। সেদেশের বেশ কিছু সংস্হা ভারতে নগরোন্নয়ন ও পরিকল্পনা, স্মার্ট সিটি ও পরিকাঠামো উন্নয়নক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার হয়ে উঠেছে। তাঁর এই সফরের ফলে দুই দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে সম্পর্ক গড়ে তোলার সুযোগ বাড়বে। আগামী ৩১ মে ভারত-সিঙ্গাপুর শিল্প ও উদ্ভাবন বিষয়ক প্রর্দশনী তিনি ঘুরে দেখবেন। সিঙ্গাপুরের রাষ্ট্রপতি হালিমাহ ইয়াকব-এর সঙ্গে আগামী ১ জুন তাঁর সাক্ষাৎ কর্মসূচি রয়েছে। ঐদিন সন্ধ্যায় সাংরিলা বৈঠকে তিনি মূল ভাষন দেবেন। এই প্রথম কোনও ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী ঐ বৈঠকে ভাষন দেবেন। এই বৈঠকে আঞ্চলিক নিরাপত্তার বিষয়গুলি এবং সমগ্র অঞ্চলে শান্তি ও স্হিতাবস্হা বজায় রাখার ক্ষেত্রে ভারতের দৃষ্টিভঙ্গি প্রকাশের সুযোগ করে দেবে। আগামী ২ জুন ক্লিফোর্ড পিয়ারে, যেখানে ১৯৪৮-এর ২৭ মার্চ গান্ধীজির চিতাভস্ম সমুদ্রে বিসর্জন দেওয়া হয়েছিল সেখানে একটি ফলকের আবরন উন্মোচন করবেন তিনি। ভারতের সঙ্গে প্রাচীন সভ্যতাগত যোগসূত্র রয়েছে এমন কয়েকটি উপাসনাস্হলেও তাঁর যাওয়ার কর্মসূচি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মোতিহারিতে স্বচ্ছাগ্রহীদের জাতীয় কনভেনশনে ভাষণ দিয়েছেন।মহাত্মা গান্ধীর নেতৃত্বে চম্পারণ সত্যাগ্রহের শতবর্ষ উদযাপনের অংশ হিসাবে এইঅনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছিল। এই উপলক্ষেপ্রধানমন্ত্রী বেশ কয়েকটি উন্নয়নমূলক প্রকল্পেরও সূচনা করেন। জল সরবরাহ এবংপরিচ্ছন্নতার ক্ষেত্রে তিনি মোতিঝিল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের একটি ফলক উন্মোচনকরেন।এছাড়া, বেতিয়া নগর পরিষদ জল সরবরাহ প্রকল্প এবং পাটনার সঈদপুরের পয়ঃপ্রণালীব্যবস্থা, পাটনার চতুর্থ জোন-এ পাহাড়ি পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা, পঞ্চম জোন-এ পাহাড়িপয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থা এবং পাহাড়ি এসটিপি প্রকল্পের মতো চারটি গঙ্গা দূষণ নিয়ন্ত্রণপ্রকল্পেরও সূচনা করেন। রেলেরক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী মুজফ্‌ফরনগর থেকে সাগৌলি এবং সাগৌলি থেকে বাল্মীকিনগরের মধ্যেডবল লাইনের কাজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেন । তিনিমাধেপুরা বৈদ্যুতিক রেল ইঞ্জিন কারখানার প্রথম পর্যায়ের কাজ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গকরেন। ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে তিনি প্রথম ১২ হাজার অশ্বশক্তির মাল পরিবহণ ইঞ্জিন ও‘চম্পারণ হামসফর এক্সপ্রেস’-এর যাত্রার সূচনা করেন। তিনি,চ্যাম্পিয়ন স্বচ্ছাগ্রহীদের মধ্যে পুরস্কারও বিতরণ করেন। এই উপলক্ষেসমবেত উৎসাহী জনতার উদ্দেশে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মোতিহারিতে আজকেরপরিবেশ যেন ১০০ বছর আগের চম্পারণ সত্যাগ্রহ সেই বিখ্যাত গণ-আন্দোলনের স্মৃতিকেজাগিয়ে তুলছে। তিনি বলেন,‘সত্যাগ্রহ থেকে স্বচ্ছাগ্রহ’-এর এই অগ্রযাত্রায় বিহারের মানুষ সর্বাগ্রে এগিয়েযাওয়ার দক্ষতা প্রদর্শন করেছেন। গত এক সপ্তাহে বিহারে শৌচাগার নির্মাণের কাজেউল্লেখযোগ্য অগ্রগতির প্রসঙ্গও তিনি তুলে ধরেন। তিনি রাজ্যের মানুষ এবং রাজ্যসরকারের কাজের বিশেষ প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, স্বচ্ছ ভারত মিশনই হোক অথবা দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াই কিংবা নাগরিক সুবিধারউন্নয়ন – এইসব ক্ষেত্রেই কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্য সরকারগুলির সঙ্গে কাঁধে কাঁধমিলিয়ে কাজ করে চলেছে। পবিত্র গঙ্গানদীতে যাতে বর্জ্য জল প্রবেশ করতে না পারে, তার জন্য ৩ হাজার কোটি টাকার ১১টিপ্রকল্প অনুমোদন করা হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তিনি বলেন, শুধুমাত্র বিহাররাজ্যেই ‘উজালা’ যোজনার আওতায় প্রায় ৫০ লক্ষ মহিলা নিঃশুল্ক রান্নার গ্যাসেরসংযোগের সুবিধা পেয়েছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি রান্নার গ্যাস এবং পেট্রোলিয়ামেরবিভিন্ন প্রকল্পের সূচনার কথা বলেন। আজ যাত্রা সূচনা করা ১২ হাজার অশ্বশক্তির ইঞ্জিনটি দেশের মালবাহী ট্রেনেরগতি বৃদ্ধির ক্ষেত্রে তাৎপর্যপূর্ণ ভূমিকা নেবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। ২০০৭ সালেরঅনুমোদিত এই প্রকল্পটির কাজ ৩ বছর আগে শুরু হয়েছিল এবং এর প্রথম পর্যায় ইতিমধ্যেইসম্পূর্ণ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার তার সমস্ত ‘মিশন’ এবংসিদ্ধান্ত মানুষের সহায়তায় পূরণ করার ক্ষেত্রে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিচ্ছন্নতারঅভিযানের কাজের অগ্রগতি প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ২০১৪ সালে এই কাজের পরিধি৪০ শতাংশ থেকে বেড়ে বর্তমানে ৮০ শতাংশে পৌঁছেছে। শৌচালয় নির্মাণের মধ্য দিয়েসামাজিক অসাম্যের দিন শেষ হচ্ছে এবং এই উদ্যোগ আর্থ-সামাজিক ও মহিলাদের ক্ষমতায়নেরএক হাতিয়ার হয়ে উঠেছে। তিনি স্বচ্ছ ভারত অভিযানের গণ-আন্দোলনকে একুশ শতকের পৃথিবীরমধ্যে তুলনাহীন এক উদ্যোগ হিসাবে বর্ণনা করেন। দেশবাসীকে ইস্টারের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রভু যীশু সবসময় সমাজ থেকে অশুভ দূর করে এবং দরিদ্র, নিপীড়িত মানুষদের প্রতি দয়াশীল হতে শিখিয়েছেন। সকলকেই আমার নমস্কার। এ বছর ১৫ আগস্ট দেশের স্বাধীনতার ৭০তম বর্ষ উদযাপনের একটি বিশেষ উপলক্ষ। এই অধিবেশনে আমাদের ৭০ বছরের যাত্রাপথ এক নতুন শীর্ষে পৌঁছে যাবে। এই লক্ষ্যে, আমাদের প্রয়োজন উচ্চমানের আলোচনা-বিতর্কে অংশগ্রহণ করা এবং কতকগুলি বড় বড় বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা, যাতে জাতি দ্রুত অগ্রগতির পথে এগিয়ে যেতে পারে। এজন্য সংসদে আমাদের সকলকেই মিলিতভাবে চেষ্টা করতে হবে দেশকে নতুনভাবে ও নতুন দিকে চালিত করার। বোম্বাই আর্ট সোসাইটিরনতুন ভবনের উদ্বোধন উপলক্ষে আজ এক ফলক উন্মোচন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে প্রদত্ত এক ভাষণে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন, তিনটি শতক জুড়ে একটি প্রতিষ্ঠান তার অস্তিত্ব টিকিয়ে রেখেছে এ এক বিরল ঘটনা। কিন্তু এই আপাত অসম্ভব ঘটনাকেই সম্ভব করে তুলেছে বোম্বাই আর্ট সোসাইটি ঊনবিংশ শতাব্দীর শেষ ভাগে প্রতিষ্ঠার পর থেকে। যে কোন শিল্পকলারই নিজস্ব বার্তা ও ক্ষমতা রয়েছে যা এই ঘটনার মূল কারণ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ধরনের প্রতিষ্ঠান চারদিকেদেওয়াল বেষ্টিত একটি ভবন মাত্র নয়, বরং, সামাজিক শক্তি ও ক্ষমতার একটি স্তম্ভ। শিশুদের মধ্যে সার্বিক ব্যক্তিত্ব বিকাশে শিল্পকলার একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এমনকি, বর্তমানের এই যান্ত্রিক যুগেও মানুষের অন্তর্নিহিত শক্তি ও ক্ষমতাকে তা কখনই ম্লান হতে দেয় না। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে জাতীয় মূলধনী পণ্য নীতিটি আজ অনুমোদিত হল। তৃতীয় মউটি সম্পাদিত হয় ২০১৫ সালের ১১ ডিসেম্বর তারিখে। আজ নয়াদিল্লিতে ডঃ আম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রটিজাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই প্রতিষ্ঠানটিরতিনি শিলান্যাস করেছিলেন ২০১৫-র এপ্রিল মাসে। এই উপলক্ষে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে ঘোষণা করেন যে, ডঃ আম্বেদকর-এর চিন্তাভাবনা ও শিক্ষাদর্শেরপ্রচার ও প্রসারে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে যাবে কেন্দ্রীয় সরকার। রাজনৈতিক গণতন্ত্রের পাশাপাশি সামাজিক গণতন্ত্রওপ্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রয়োজন – ডঃ আম্বেদকর-এর এই কথাগুলি প্রসঙ্গত স্মরণ করেন শ্রীনরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, গত তিন থেকে সাড়ে তিন বছরে এই সামাজিক গণতন্ত্রেরস্বপ্ন পূরণে কাজ করে চলেছে তাঁর সরকার। জন ধন যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা, স্বচ্ছ ভারতমিশন, বিমা কর্মসূচি, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা এবং সাম্প্রতিককালের সৌভাগ্য যোজনারকথা উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী মিঃ আসাদুজ্জামান খান বৃহস্পতিবার এখানে দেখা করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ভারতের সমর্থন ও ঐকান্তিকতার জন্যশ্রী মোদী’কে ধন্যবাদ জানান বাংলাদেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী। ভারতীয় ক্রিকেট কন্ট্রোল বোর্ড (বি.সি.সি.আই.)-এর সভাপতি শ্রী জগমোহন ডালমিয়া’র প্রয়াণে শোক জ্ঞাপন করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “শোকের এই সময় শ্রী জগমোহন ডালমিয়া’র পরিবারের আমার সমবেদনা রইল। তেলেঙ্গানা রাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবসে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। অন্ধ্রপ্রদেশবাসীদেরও প্রধানমন্ত্রী শুভকামনা জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, তেলেঙ্গানার মানুষকে শুভেচ্ছা জানাই। আগামী বছরগুলিতে রাজ্যের মানুষের স্বপ্ন ও প্রত্যাশা পূরণ হোক। অন্ধ্রপ্রদেশের জনগণকেও প্রধানমন্ত্রী শুভকামনা জানিয়েছেন। ভুটান সরকারের কৃষি ও অরণ্য মন্ত্রী তথা বিশ্ব বাঘ ফোরামের চেয়ারম্যান, বাঘ সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন দেশের মন্ত্রীগণ, কেন্দ্রীয় পরিবেশ, অরণ্য ও জলবায়ু সম্পর্কিত মন্ত্রী শ্রী প্রকাশ জাভড়েকর, মঞ্চে উপবিষ্ট বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বাঘ সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত দেশগুলি থেকে আগত প্রতিনিধিবৃন্দ, ভদ্রমহিলা ও ভদ্রমহোদয়গণ, আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। বাঘ – এই প্রাণীটি আমাদের সকলকে আজ এখানে সমবেত করেছে। বন্যপ্রাণী রক্ষায় আপনারা কতটা উদ্যোগী ও সচেতন তা আজ প্রমাণিত হয়েছে আপনাদের এখানে উপস্থিতির মাধ্যমে। আমরা সকলেই জানি যে পরিবেশগত এক পিরামিড ও খাদ্যশৃঙ্খলের সঙ্গে যুক্ত বাঘ নামের এই প্রাণীটি। প্রকৃতপক্ষে বাঘ সংরক্ষণের সুফল কিন্তু প্রচুর। শুধুমাত্র অর্থনৈতিক দিক থেকে তা পরিমাপ করা সম্ভব নয়। কারণ প্রকৃতিকে দান বা মূল্যের নিক্তিতে বিচার করা যায় না। ভারতে বাঘ শুধু একটি বন্যপ্রাণীমাত্র নয়, তার থেকেও অনেক অনেক বেশি কিছু। আমাদের সবক’টি দেব-দেবীই কোন না কোন প্রাণী, বৃক্ষ বা নদীর সঙ্গে যুক্ত। কখনও কখনও এই সমস্ত প্রাণীকে দেব বা দেবী জ্ঞানে পূজাও করা হয়। তাই, বাঘ যে আমাদের জাতীয় প্রাণী এতে অবাক হওয়ার কিছুই নেই। বাঘের অভয়ারণ্য রয়েছে এ ধরনের দেশগুলিতেও বাঘের সঙ্গে কোন না কোন সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকারের যোগসূত্র রয়েছে বলেই আমার বিশ্বাস। প্রাণী রাজ্যে যারা বিচরণ করে সাধারণভাবে তারা কারোর কোনরকম ক্ষতি করে না। ব্যতিক্রম শুধু মানুষই। এই প্রসঙ্গে আমি স্মরণ করি গৌতম বুদ্ধের সেই বিখ্যাত বাণী, “অরণ্য হল অসীম দয়ার এক বিচিত্র নিদর্শন। এই সমস্ত উদ্যোগের সম্মিলিত ফল রূপে আমরা পেয়েছি ‘বিশ্ব বাঘ পুনরুদ্ধার কর্মসূচি’। বিশ্ব বাঘ ফোরামের চেয়ারম্যান মিঃ দোরজির প্রচেষ্টাও বিশেষভাবে প্রশংসনীয়। এ পর্যন্ত আমি যা শুনে এসেছি তা থেকে জানা যায় যে বাঘের অস্তিত্ব রয়েছে এমন দেশগুলিতে এই প্রাণীটির থাকার জায়গা ভীষণভাবে সঙ্কুচিত হয়ে এসেছে। এই বৃহৎ প্রাণীটির বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পাচারের প্রবণতার ফলে পরিস্থিতি আরও ভয়ানক হয়ে উঠেছে। ভারতেও চোরাগোপ্তাভাবে বাঘ শিকার পরিবেশগত ভারসাম্যকে নষ্ট করে তুলেছে। অরণ্য ও বন্যপ্রাণীপরস্পরের সঙ্গে সম্পৃক্ত, একে অপরের থেকে অবিচ্ছেদ্য। একে অপরের পরিপূরক। একের ধ্বংসের অর্থই অন্যের বিনাশ। জলবায়ু পরিবর্তনের তা একটি হেতু বা কারণ হয়ে দাঁড়ায় যা আমাদের নানাভাবে ক্ষতিসাধন করে চলে। এই পরিস্থিতির শিকার এখন সারা পৃথিবীর মানুষই। বাঘ সংরক্ষণ এখন ভারত সরকার ও রাজ্যগুলির এক সম্মিলিত দায়িত্ব। এই লক্ষ্যে রাজ্য সরকারগুলির ভূমিকা ও প্রচেষ্টারও বিশেষ প্রশংসা করি আমি। কিন্তু জনসাধারণের সক্রিয় সমর্থন ছাড়া সরকারের এই প্রচেষ্টা কখনই সফল হতে পারে না। তাই, ব্যাঘ্র প্রকল্পের সাফল্যের মূলে রয়েছে আমাদের সাংস্কৃতিক উত্তরাধিকার যা আমাদের শিক্ষা দেয় সহমর্মিতা ও সহাবস্থানের নীতি। আমাদের জাতীয় বাঘ সংরক্ষণ কর্তৃপক্ষ বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। আধুনিক প্রযুক্তিকে আরও বেশি করে ব্যবহার করা হচ্ছে বাঘ শিকারের ঘটনা রোধে। যে সমস্ত অভয়ারণ্য স্পর্শকাতর এলাকাগুলিতে অবস্থিত, সেখানে ইনফ্রারেড এবং থার্মাল ক্যামেরার সাহায্যে নজরদারির ব্যবস্থা রয়েছে ২৪ ঘন্টাই। বেশ কিছু নিয়মনীতি গড়ে তোলা হয়েছে পাহারা ও নজরদারি রক্ষার কাজে। বাঘের বসবাসযোগ্য অরণ্য এলাকায় নজরদারির কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে রেডিও টেলিমেট্রি পদ্ধতি। বাঘ সংরক্ষণের লক্ষ্যে এই সমস্ত কাজে এ বছর অর্থ বরাদ্দের পরিমাণও আমরা দ্বিগুণ করে তুলেছি। এই প্রাণীটির সংরক্ষণে সংস্থানের পরিমাণ ১৮৫ কোটি টাকা থেকে আমরা উন্নীত করেছি ৩৮০ কোটি টাকায়। বাঘ সংরক্ষণ তথা প্রকৃতি সংরক্ষণ যে কোনভাবেই উন্নয়নকে ব্যাহত করে না, সে সম্পর্কে আমি দৃঢ় বিশ্বাসী। দুটি কাজই একে অপরের সম্পূরক। আমাদের যা করা প্রয়োজন তা হল যে সমস্ত এলাকা বা অঞ্চলে বাঘ সংরক্ষণই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য বা উদ্দেশ্য নয়, সেই সমস্ত অঞ্চলের জন্য আমাদের প্রকৌশলগত ব্যবস্থাকেঢেলে সাজানো। এটি নিঃসন্দেহে একটি কঠিন কাজ, কিন্তু তা করা সম্ভব। বাঘ ও বন্যপ্রাণী রক্ষার জন্য আমাদের উদ্যোগকে বিভিন্ন পরিকাঠামোর সঙ্গে যুক্ত করার মধ্যেই নিহিত রয়েছে আমাদের দক্ষতা তথা পারদর্শিতার বিষয়টি। ভারতে বাঘ সংরক্ষণ পরিকল্পনার মধ্য দিয়ে এই লক্ষ্যে উপনীত হওয়া সম্ভব। বাঘ সংরক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে যে সমস্ত অঞ্চলে সেখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশকে ‘প্রকৃতির রাজধানী’ বলেই বিবেচনা করা উচিত। কয়েকটি বাঘ সংরক্ষণ কেন্দ্রের অর্থনৈতিক মূল্যায়নের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে আমাদের বেশ কয়েকটি সংস্থা। তাদের সমীক্ষায় প্রকাশ, বাঘ সংরক্ষণ ছাড়াও এই অভয়ারণ্যগুলির মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক তথা সাংস্কৃতিক ও আধ্যাত্মিক সুফল লাভও সম্ভব। আর এ সমস্ত কিছুকেই আমরা মনে করি পরিবেশগত পরিষেবা। তাই, বাঘ ও প্রকৃতি সংরক্ষণের কাজকে আমরা উন্নয়নের পরিপন্থী বলে মনে করি না, বরং উন্নয়ন সম্ভব করে তোলার একটি উপায় বা মাধ্যম বলেই মনে করি। বিকাশ ও প্রগতির অর্থনৈতিক পরিসংখ্যানের সঙ্গে পরিবেশগত ভারসাম্যের বিষয়টি যুক্ত করার মধ্যেই নিহিত রয়েছে মূল সাফল্য। বাঘ তথা প্রকৃতি সংরক্ষণের কাজে শিল্প সংস্থাগুলিকে যুক্ত করার কাজে আমরা সাফল্য অর্জন করব বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। এটিই হল এই ধরনের একমাত্র আন্তঃসরকারি পর্যায়ের একটি সংগঠন। বিশ্ব বাঘ উদ্যোগ পরিষদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সহযোগিতার মাধ্যমে কাজ করে চলেছে এই সংস্থাটি। তাই এই সম্মেলনের আয়োজক দেশ হিসেবে আমাদের পূর্ণ সমর্থন ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি আপনাদের। ভারতের বন্যপ্রাণী সম্পর্কিত সংস্থাগুলির সংশ্লিষ্ট কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির কাজে সাহায্য ও সমর্থন প্রসারের জন্যও আমরা বিশেষভাবে আনন্দিত। বিপন্ন অস্তিত্বের জীবজন্তুকে নিয়ে ব্যবসা-বাণিজ্যের বিরুদ্ধে যে সমস্ত আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে, বাঘ সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত দেশগুলি তাতেও সমর্থন ও সহযোগিতা জানাতে অঙ্গীকারবদ্ধ। এই প্রসঙ্গে আমি আপনাদের আরেকটি সুসংবাদ দিতে চাই। দক্ষিণ এশীয় বন্যপ্রাণী এনফোর্সমেন্ট নেটওয়ার্কের নিয়মনীতি আমরা আনুষ্ঠানিকভাবে অনুসরণ করতে চলেছি। পরিশেষে আমি একথাই বলতে চাই যে বাঘ সংরক্ষণের বিষয়টি কোন ঐচ্ছিক বা বিকল্প বিষয় নয়। এটি আমাদের অবশ্য কর্তব্য। বন্যপ্রাণীদের ওপর যে কোন ধরনের অত্যাচার ও অপরাধ রোধে আঞ্চলিক সহযোগিতা একান্তভাবে জরুরি। তাই আসুন, এই সম্মেলনের মধ্য দিয়ে বাঘ এবং তার বিচরণভূমি রক্ষার কাজে আমরা সঙ্কল্পবদ্ধ হই। এই লক্ষ্যে বাঘ সংরক্ষণের সঙ্গে যুক্ত অন্যান্য দেশগুলির সঙ্গে নিবিড় সম্পর্ক গড়ে তুলতে ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর এ বছর এপ্রিল মাসে সৌদি আরব সফরকালে এই চুক্তিটি সম্পাদিত হয় রিয়াধে। আধুনিক মহানায়ক মহাত্মা গান্ধী বলেছিলেন – ‘যা আজ দেখতে পাবো না সেই ভাবী বিশ্বের জন্যও আমাদের চিন্তা করা উচিত’। যখনই বিশ্ব-সমুদায় একত্রিত হয়ে ভবিষ্যৎ নিয়ে ভাবনাচিন্তা করছে, দায়িত্বের সঙ্গে সঠিক লক্ষ্যে মানবতা বিকাশের পথ সুগম হয়েছে। এই গুরুত্বপূর্ণ শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের জন্য আমি রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব মহোদয়কে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। এজেন্ডা-২০৩০ – এর পরিকল্পনা সুদূরপ্রসারী এবং তার উদ্দেশ্যেও ততটাই ব্যাপক। বিগত কয়েক দশক ধরে বিশ্ব সমুদায় যেসব সমস্যার সম্মুখীন সেগুলির সমাধানকে এখানে অধিক গুরুত্ব দেওয়া হবে। পাশাপাশি সামাজিক, আর্থিক এবং পরিবেশ সংক্রান্ত আমাদের পরিণত ভাবনাচিন্তাও এখানে প্রতিফলিত হবে। আমি ‘ব্লু রেভুলিউশন’-এর পক্ষে, যাতে আমাদের ছোট ছোট দ্বীপরাষ্ট্রগুলির নিরাপত্তা এবং সমৃদ্ধি, সমুদ্র সম্পদের যথাযথ উপযোগ এবং নির্মল নীলাকাশ – এই তিনটি বিষয়ের সমন্বয় ঘটে। আজ ভারত যে ধরণের উন্নয়নের পথ বেছে নিয়েছে আর রাষ্ট্রসঙ্ঘ যে ধরণের সুদূরপ্রসারী উন্নয়নের লক্ষ্য স্থাপন করছে তার মধ্যে প্রকরণগত মিল রয়েছে। ভারত স্বাধীন হওয়ার পর থেকে দারিদ্র্যমোচনের স্বপ্নকে সাকার করার চেষ্টা চালিয়েছে। আজ আমরা গরীবদের সামর্থ বৃদ্ধির মাধ্যমে দারিদ্র্য দূরীকরণের পথ বেছে নিয়েছি। শিক্ষা এবং দক্ষতা উন্নয়নকে অগ্রাধিকার দিয়েছি। সকলের জন্য মাথা গোঁজার নিজস্ব আবাস, বিদ্যুৎ, জল, শিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং পরিচ্ছন্নতাকে আমরা অগ্রাধিকার দিয়েছি। এই লক্ষ্যসমূহ সাধনের জন্য সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা এবং নিশ্চিত সময়সীমা নির্ধারিত হয়েছে। সমৃদ্ধির পথে স্থায়ী উন্নয়নকল্পে আমরা দৃঢ়সংকল্প। আমি সেই সংস্কৃতির প্রতিনিধিত্ব করছি যেখানে ধরিত্রীকে মা সম্বোধন করা হয়। আমাদের বেদপাঠে উচ্চারিত হয় – আমরা আমাদের সাফল্য এবং উৎসসমূহকে অন্যদের সঙ্গে ভাগ করে নেবে। ভারতীয় ঐতিহ্যে গোটা বিশ্বকে একটি পরিবাররূপে দেখা হয়। স্থায়ী উন্নয়ন সকল দেশের জন্যই একটি রাষ্ট্রীয় উত্তর দায়িত্বের বিষয়। পাশাপাশি, তাঁদের নীতি-নির্ধারণের জন্য বিকল্প অন্বেষণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। আজ আমরা সবাই রাষ্ট্রসঙ্ঘের শীর্ষ সম্মেলনে এসে উপস্থিত হয়েছে কারণ, আমরা প্রত্যেকেই মনে করি অনিবার্যরূপে সকল প্রয়াসের কেন্দ্রীয় ভাবনা হওয়া উচিত আন্তর্জাতিক ঐক্য। উন্নয়ন হোক কিংবা আবহাওয়া পরিবর্তনের সমস্যার মোকাবিলা, আমাদের সামূহিক প্রয়াসের সিদ্ধান্ত হোক ‘কমন বাট ডিফারেনসিয়েটেড’ দায়িত্ব। আবহাওয়া পরিবর্তনের সমস্যার সঙ্গে আমাদের প্রত্যেকের নিরাপত্তা জড়িয়ে রয়েছে। কিন্তু, যদি আমরা আবহাওয়া সংক্রান্ত বিচারের কথা ভাবি, তা হলে দরিদ্রদের প্রাকৃতিক বিপর্যয়সমূহ থেকে নিরাপদ রাখার একটি সংবেদনশীল সংকল্প জেগে ওঠে। আবহাওয়া পরিবর্তনের সমস্যার সঙ্গে যুঝতে আমাদের একটি বিশ্বব্যাপী জন-ভাগীদারী বা গণঅংশীদারিত্বের ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে। যার মাধ্যমে প্রযুক্তি, আবিষ্কার এবং বিনিয়োগের সমন্বয়ে আমরা নির্মল এবং পুনর্নবীকৃত শক্তি উৎপাদনকে সবার জন্য সুলভ করে তুলতে পারবো। আমাদের নিজেদের জীবনশৈলীতে পরিবর্তন আনার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, যাতে আমাদের জ্বালনি নির্ভরতা হ্রাস পায় আর আমরা সুদূরপ্রসারী উন্নয়নের পথে পা বাড়াই। আমি আশা করবো, বিকশিত দেশগুলি উন্নয়ন এবং আবহাওয়া পরিবর্তনের জন্য নিজেদের অর্থনৈতিক প্রতিবদ্ধতা পালন করবে, ‘উদাউট ইন এনিওয়ে পুটিং বোথ আন্ডার দ্য সেইম হেড’! আমরা দেখছি, দূরত্ব সমস্যা থেকে মুক্তি এনে দেয় না। আসুন, আমরা সবাই মিলে এমন পৃথিবী গড়ে তুলি যেখানে প্রতিটি প্রাণী ও উদ্ভিদ নিরাপত্তা অনুভব করবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য পরিবেশ আরও বাসযোগ্য, এর থেকে মহান আর কোনও উদ্দেশ্য আমাদের মনে থাকতে পারে না। আবার এটাও ঠিক যে, আর কোনও উদ্দেশ্য এর থেকে বেশি প্রতিস্পর্ধার সম্মুখীন হবে না। আর রাষ্ট্রসঙ্ঘের ৭০ বছর বয়সে আমরা সকল দেশের কাছে তাদের বিবেক, অভিজ্ঞতা, উদারতা, সহৃদয়তা, কৌশল এবং প্রযুক্তির যথাযথ ভারসাম্য মুক্ত প্রয়োগের মাধ্যমে মানব সভ্যতার এই সংকটগুলির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে বিজয়প্রাপ্তির আশা রাখি। আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমরা সাফল্য পাবো। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে বুধবার (১০ই অক্টোবর) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে পরিবেশগত ক্ষেত্রে ভারত ও ফিনল্যান্ডের মধ্যে সহযোগিতা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের প্রস্তাব অনুমোদন করা হয়েছে। সাক্ষী মালিক মহিলাদের কুস্তিতে রিও অলিম্পিকে ব্রোঞ্জ পদক পাওয়ায়প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ব্রোঞ্জ পদক জয়েরজন্য তাঁকে অভিনন্দন। রক্ষাবন্ধনের এইবিশেষ দিনে ভারতদুহিতা সাক্ষী মালিক জিতলেন ব্রোঞ্জ পদক আর আমাদের করে তুললেনগর্বিত। এইঅনুষ্ঠানটি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী তাঁর কয়েকটি ট্যুইট বার্তায় রবিবার বলেছেন : “আগামীকাল‘তরুণ ভারত, নবীন ভারত’ বিষয়টির ওপর ছাত্রছাত্রীদের এক সম্মেলনে বক্তব্য রাখব আমি। যুবশক্তিরওপর বিশেষ আস্থা ও বিশ্বাস ছিল স্বামী বিবেকানন্দের। জাতি গঠনের কাজে যুব সমাজেরএক গুরুত্বপূর্ণ অংশগ্রহণের স্বপ্ন দেখতেন তিনি। নয়া দিল্লি: ২০আগস্ট: মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর দেববর্মা মাণিক্য বাহাদুর-এরজন্মজয়ন্তীতে ত্রিপুরাবাসীকে শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি| শুভেচ্ছা বর্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “ত্রিপুরার সমস্তপ্রান্ত জুড়ে প্রবল উত্সাহের সঙ্গে মহারাজা বীর বিক্রম কিশোর দেববর্মা মাণিক্যবাহাদুরের জন্মজয়ন্তী উদযাপিত হচ্ছে জেনে আনন্দিত হয়েছি| গতকাল সন্ধ্যায় ভারতের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দূরভাষ মারফৎ কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্টবারাক ওবামা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১২৫ কোটি ভারতবাসী এখন ‘ স্বরাজ্য ’ থেকে ‘ সুরাজ ’ – এর পথে যাত্রাসম্পূর্ণ করতে কৃতসংকল্প। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, এমন একটা সময় ছিল যখন অভিযোগের পরঅভিযোগে বিদ্ধ করা হতো দেশের সরকারকে। কিন্তু বর্তমানে সরকারের দিকে মানুষ তাকিয়েআছেন তাঁদের অসংখ্য প্রত্যাশা নিয়ে। আশা থেকে যখন প্রত্যাশার জন্ম নেয় তখন তাআমাদের ‘ সুরাজ ’ – এর লক্ষ্যে যাত্রাপথেদ্রুত গতি ও শক্তি সঞ্চার ঘটায়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সরকার এপর্যন্ত কি কাজ করেছেসেটাই তার মূল বিবেচ্য বিষয় নয়, তাঁর দৃষ্টি বরং কর্মসংস্কৃতির দিকে। ‘ সুরাজ ’ – এর সঙ্গেসংবেদনশীলতা, দায়িত্ববোধ, দায়বদ্ধতা, স্বচ্ছতা, দক্ষতা এবং সুপ্রশাসনের যোগ রয়েছেবলে ব্যাখা করেন প্রধানমন্ত্রী। এর প্রতিটি ক্ষেত্রেই সরকারের কাজের নমুনা ওদৃষ্টান্ত তুলে ধরে তিনি বলেন, দেশের বড় বড় হাসপাতালগুলিতে অন-লাইনে নথিভুক্তি,দ্রুততার সঙ্গে আয়কর ফেরত দেওয়ার ব্যবস্হা, দ্রুত পাসপোর্ট মঞ্জুর করা, কোম্পানীনথিভুক্তির কাজ দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করা এবং সরকারি চাকরিতে গ্রুপ-সি এবংগ্রুপ-ডি পদে নিয়োগের ক্ষেত্রে সাক্ষাৎকার তুলে দেওয়া এই ধরণের সরকারি পদক্ষেপেরদৃষ্টান্ত বলে উল্লেখ করেন তিনি। প্রশাসন ও পরিচালনের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলিতে কিভাবে দ্রুততারসঙ্গে সমস্ত কাজ সেরে ফেলা হচ্ছে তারও দৃষ্টান্ত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এইপ্রসঙ্গে তিনি গ্রামীণ সড়ক নির্মাণ, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানী উৎপাদন ক্ষমতাবৃদ্ধি, বিদ্যুৎ সংবহন লাইন সম্প্রসারণ এবং রান্নার গ্যাস সংযোগের কথা তুলে ধরেন। জন-ধন যোজনার আওতায় ২১ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা, পল্লী অঞ্চলে২ কোটি শৌচাগার নির্মাণ এবং স্বল্প দিনের মধ্যেই বিদ্যুৎহীন ১০ হাজার গ্রামেবিদ্যুৎসংযোগ পৌঁছে দেওয়ার কথাও প্রসঙ্গতঃ উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। এলইডি বাল্ব প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, এই ধরণের বাল্বের দামঅনেকটাই কমিয়ে আনা হয়েছে সাধারণ মানুষের নাগালে তা পৌঁছে দিতে। এলইডি বাল্বেরব্যাপক ব্যবহার বিদ্যুৎশক্তির বিশেষ সাশ্রয় ঘটাবে বলে উল্লেখ করেন তিনি। আখ চাষিদের বকেয়া প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার ব্যবস্হা, নতুন এলপিজিসংযোগ দেওয়া, এয়ার ইন্ডিয়া এবং বিএসএনএল-এর মতো রাষ্টায়ত্ব সংস্হাগুলির লভ্যাংশঅর্জন ইত্যাদির দৃষ্টান্ত তুলে ধরে সরকারি কাজকর্মের সাফল্যের নজিরও টেনে আনেনপ্রধানমন্ত্রী। সরকারি কাজে স্বচ্ছতার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভর্তুকিসহায়তা এখন সাফল্যের সঙ্গে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে যোগ্য প্রার্থী ও গ্রাহকদের কাছে। প্রশাসনেরবিভিন্ন ক্ষেত্রে অগ্রগতি বিশেষভাবে গুরুত্ব লাভ করেছে আন্তর্জাতিক রেটিংসংস্হাগুলির কাছে। সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসুচি যুব সমাজের কর্মসংস্হানের সুযোগসৃষ্টির পক্ষে বিশেষ সহায়ক হয়েছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। দোকান ও বাণিজ্যিকপ্রতিষ্ঠান সম্পর্কিত মডেল আইনটি চালু করার ফলে সপ্তাহের সবকটি দিনেই দোকান ওবানিজ্যিক সংস্হা খুলে রাখা যাবে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। জঙ্গি ও সন্ত্রাসবাদীদের যারা শহীদের মর্যাদা দিতে চায় তাদের কঠোরভাষায় নিন্দা করেন প্রধানমন্ত্রী। ভারতের মানবতাবাদী দৃষ্টিভঙ্গী এবং যেকোন ধরনেরজঙ্গি কার্যকলাপের কঠোর নিন্দার মনোভাব সমগ্র বিশ্বের স্বীকৃতি আদায় করেছে বলেউল্লেখ করেন তিনি। দেশকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে এক সাধারণ সংকল্প গ্রহণেদেশবাসীকে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে সরকারের কয়েকটি নতুন উদ্যোগ ও কর্মসূচিরকথাও ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি জানান, স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পেনশন প্রতিমাসে ২৫,০০০ টাকা থেকে বাড়িয়ে করা হবে ৩০,০০০ টাকা। আদিবাসী স্বাধীনতাসংগ্রামীদের স্মরণে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে স্মারক ও স্মৃতি সংগ্রহশালা গড়ে তোলাহবে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার মুম্বাইয়ে এক অনুষ্ঠানে ভারতীয় চলচ্চিত্রের জাতীয় সংগ্রহালয়ের নতুন ভবনের উদ্বোধন করেন। অনুষ্ঠানে মহারাষ্ট্রের রাজ্যপাল শ্রী সি বিদ্যাসাগর রাও, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ, দুই কেন্দ্রীয় প্রতিমন্ত্রী শ্রী রামদাস আথাওয়ালে ও কর্ণেল রাজ্যবর্ধন রাঠোর সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি উপস্থিত ছিলেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন, ভারতীয় চলচ্চিত্রের জাতীয় সংগ্রহালয়টি তরুণ প্রজন্মকে ভারতীয় সিনেমা সম্বন্ধে জানতে ও বুঝতে খুব সাহায্য করবে। চলচ্চিত্রের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, তাঁদের ছবিতে যে সমস্ত চরিত্র ফুটে উঠেছে, তা তরুণ প্রজন্মের কল্পনার সঙ্গে মিশে গেছে। সিনেমায় এ ধরণের চরিত্রগুলির বিশ্ব জুড়ে গ্রহণযোগ্যতার দরুণ তরুণ প্রজন্মের ভারতীয়রা কেবল ব্যাটমান – এরই অনুরাগী নয়, বাহুবলীরও অনুগামী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সফট্‌ পাওয়ার হিসাবে ভারতের গ্রহণযোগ্যতা, ব্র্যান্ড ইন্ডিয়া নামের প্রতি সুবিচার ও বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়াতে ভারতীয় চলচ্চিত্রের বড় ভূমিকা রয়েছে। এখন সিনেমার মাধ্যমে অনাময়, মহিলা ক্ষমতায়ন, ক্রীড়া প্রভৃতির মতো গুরুত্বপূর্ণ সামাজিক বিষয়গুলির বার্তা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। দেশ গঠনের পাশাপাশি, ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এর উপলব্ধিকে আরও মজবুত করতে সিনেমা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশে পর্যটনের বিকাশেও অবদান যোগানোর বিপুল সম্ভাবনা চলচ্চিত্রে রয়েছে বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। দেশের বিভিন্ন অংশে চলচ্চিত্রের দৃশ্যায়নের জন্য একক অনুমোদন জানালা ব্যবস্থা গড়ে তোলা হচ্ছে, যাতে চলচ্চিত্র নির্মাণ ও প্রযোজনা আরও সহজ হয়ে ওঠে। ফিল্ম পাইরেসির সমস্যা দূরীকরণে ১৯৫২-র সিনেমাটোগ্রাফ আইন সংশোধনের কাজ চলছে বলেও শ্রী মোদী জানান। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, অ্যানিমেশন, ভিজ্যুয়াল এফেক্টস্‌, গামিং ও কমিক্স ক্ষেত্রের জন্য জাতীয় স্তরের এক উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। জনসংযোগ ও বিনোদন ক্ষেত্রের জন্য একটি স্বতন্ত্র বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্ব দিয়ে শ্রী মোদী এই ধরণের প্রতিষ্ঠান স্থাপনে চলচ্চিত্র ব্যক্তিত্বদের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ ও মতামত আহ্বান করেন। জম্মু ও কাশ্মীরের শ্রীনগর থেকে আগত ৩০ জন স্কুল ছাত্রীর একটি দল শনিবারএখানে দেখা করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। এই দলটি বর্তমানে ভারতীয় সেনাবাহিনী আয়োজিত অপারেশন সদ্ভাবনার একটি অঙ্গহিসাবে ভারতের বিভিন্ন প্রান্ত সফর করছে। শিক্ষা, বিশেষত কন্যাসন্তানের শিক্ষা, স্বচ্ছ ভারত এবং ছাত্রীদের স্বপ্ন ওআশা-আকাঙ্খার মতো বিষয়গুলি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এদিন আলোচনা করেন ছাত্রীদের ঐ দলটিরসঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতাকালে ছাত্রীদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাবেকন্যাসন্তানদের শিক্ষার প্রসারে গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপগুলি ব্যাখ্যা করেনপ্রধানমন্ত্রী। স্বচ্ছ ভারত মিশনের মাধ্যমে স্বাস্থ্য ও পর্যটনের মতো বিষয়গুলি যেবিশেষভাবে উৎসাহলাভ করবে – এ কথাও প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি। মনযোগ বৃদ্ধি করতেযোগাভ্যাসের উপকারিতার বিষয়টিও ছাত্রীদের কাছে ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী। · ঋণ খেলাপিদের মোকাবিলায় জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির মধ্যে শক্তিশালী সহযোগিতা বৃদ্ধিতে গুরুত্ব। · সব ঋণ খেলাপিদের প্রবেশ বন্ধ করতে ও অন্য দেশকে তাদের নিরাপদ স্থান হিসাবে চিহ্নিত না করতে জি-২০ গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির একটি কার্যকর প্রক্রিয়া গঠনে গুরুত্ব। · দুর্নীতির বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের নীতি, সংঘবদ্ধ অপরাধের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রসংঘের নীতিগুলির মূল চিন্তাভাবনাকে, বিশেষ করে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার বিষয়টি কার্যকর করা। · ঋণ খেলাপিদের সম্পর্কে যথাসময়ে তথ্য আদান-প্রদানের জন্য সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির মধ্যে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা বৃদ্ধির বিষয়টিতে প্রাধান্য দেওয়ার পরামর্শ। · ঋণ খেলাপি অভিযুক্তদের চিহ্নিত করার জন্য এর একটি নির্দিষ্ট পরিচয়পত্র তৈরি করা। · ঋণ খেলাপি অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনিভাবে লড়াইয়ের জন্য একটি সর্বসম্মত নীতি-প্রক্রিয়া গঠন এবং প্রতিটি জি-২০ দেশের নিজস্ব আইন অনুসারে একটি সংঘবদ্ধ নীতি-নির্দেশিকা তৈরি। · দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়া-সহ নীতি খেলাপের বিভিন্ন ঘটনার বিরুদ্ধে সাফল্য অর্জন করলে সেগুলি নিয়ে আলোচনার জন্য একটি সাধারণ মঞ্চ গঠন। আমি আপনাদের, অধ্যাপক মৈত্রী উইক্রমাসিংহে ও আপনাদের প্রতিনিধিদলের সদস্যদের উষ্ণ অভ্যর্থনা জানাতে পেরে আনন্দিত। ইউনাইটেড ন্যাশনাল ফ্রন্ট ফর গুড গভর্ন্যান্স জোটকে শ্রীলঙ্কায় গত মাসের সংসদীয় নির্বাচনে জয়ী হওয়ার জন্য আপনাদের আরও একবার অভিনন্দন জানাই। আপনি প্রথম বিদেশি রাষ্ট্র সফরের জন্য ভারত’কে বেছে নেওয়ায় আমরা অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি। ভারত-শ্রীলঙ্কা সম্পর্কের ক্ষেত্রে আপনার বিশ্বাস এবং সমর্থনের জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি আমাদের অত্যন্ত মূল্যবান বন্ধু, শ্রীলঙ্কার উন্নতি ও দায়বদ্ধতার জন্য যার স্বপ্ন ভারতে উচ্চ প্রশংসিত। আপনাদের রাষ্ট্রপতি সিরিসেনা প্রথম বিদেশ সফরের জন্য গত ফেব্রুয়ারি’তে ভারত’কে বেছে নেওয়ায় আমরা গর্বিত হয়েছিলাম। আমারও শ্রীলঙ্কায় গত মার্চে এক অসাধারণ সফরের সুযোগ ঘটেছিল। আর এখন আমরা আমাদের মধ্যে পেয়েছি, প্রধানমন্ত্রী শ্রী উইক্রমাসিংহে’কে। শ্রীলঙ্কা এ বছর দু’বার পরিবর্তন, সংস্কার, সামঞ্জস্য ও উন্নতির জন্য ভোট দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার গণতান্ত্রিক ঐতিহ্য সম্পর্কে এর থেকে বলিষ্ঠতর কোনও কথা হতে পারে না। শান্তিপূর্ণ, সকলকে সামিল করে নিয়ে এক সমৃদ্ধ ভবিষ্যতের দিকে শ্রীলঙ্কার যাত্রা এর থেকে কোনও স্পষ্টতর সংকেত মেলে না। তাই সম্প্রতি শ্রীলঙ্কা সরকার কয়েকটি তাৎপর্যপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়ায় আমরা আনন্দিত। এই নেতৃত্ব এক বড় আশার সময় প্রশংসনীয় রাজনৈতিক ঐক্যের পরিচয় দিয়েছে। শ্রীলঙ্কার বিচক্ষণতা ও নেতৃত্বের প্রত্যয় ও সেদেশের মানুষের সমর্থনে শ্রীলঙ্কা যে প্রকৃত উন্নয়নের সুফল অর্জন করবে, যাতে করে সেদেশে বসবাসকারী শ্রীলঙ্কার তামিল জনগোষ্ঠী সহ শ্রীলঙ্কার সকল অধিবাসী সাম্য, ন্যায়, শান্তি ও মর্যাদার জীবন-যাপন করে এক ঐক্যবদ্ধ শ্রীলঙ্কায়। আমাদের দুটি দেশ, দক্ষিণ এশিয়া এবং আমাদের গোটা নৌ-এলাকার জন্যই আপনাদের উন্নতি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী ও আমি আজ অসাধারণ আলোচনা সেরেছি। মার্চ মাসের পর থেকে মুদ্রা সোয়াপ ব্যবস্থা সহ দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে কিছু তাৎপর্যপূর্ণ পরিবর্তনকে আমরা স্বাগত জানিয়েছি। প্রধান প্রধান দ্বিপাক্ষিক প্রয়াস ও প্রকল্পগুলিতে এগিয়ে চলার কাজে এখন গতি আসবে বলে আমরা আশা প্রকাশ করেছি। আমরা উভয়েই গভীরতর অর্থনৈতিক সম্পর্ক চাই। আমাদের বাণিজ্য আরও বাড়ুক এবং শ্রীলঙ্কার ক্ষেত্রে সেটা আরও ভারসাম্যযুক্ত হোক, এটা আমাদের আশা। আমরা বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষিক ব্যবস্থা গড়ে তোলা সহ এই লক্ষ্য আরও খোলাখুলি এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ ভারতীয় বাজারে কী করে অর্জন করতে পারবো, সে নিয়েও আমাদের মধ্যে আলোচনা হয়েছে। ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা যাঁরা শ্রীলঙ্কার অর্থনৈতিক উন্নয়ন বিশেষ করে, শক্তি, পরিকাঠামো ও পরিবহণ ক্ষেত্রে অংশগ্রহণে আগ্রহী, তাদের জন্য ওঁর সমর্থন চেয়েছি। আমাদের দুটি দেশের মধ্যে আরও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ ব্যবস্থা গড়ে তুলতে, মানবিক ও অর্থনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনের মাধ্যমে আমাদের দু’দেশের সমাজের সর্বস্তরের মানুষের যাতে উপকার হয়, আমি সেজন্য ভারতের পূর্ণ সমর্থন দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী উইক্রমাসিংহে’কে আমাদের উন্নয়নমূলক অংশীদারিত্ব চালিয়ে যাওয়ার জন্য আমি সবরকম দায়বদ্ধতার আশ্বাস দিয়েছি – পরিকাঠামো, রেল, শক্তি উন্নয়ন প্রকল্প, কৃষি, সক্ষমতা গড়ে তোলা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মহাকাশ ও অসামরিক পারমানবিক ক্ষেত্রের সবকটিতে। মানুষে মানুষে বন্ধনের লালন-পালনের প্রয়াস আমরা চালিয়ে যাবো। অতি সম্প্রতি আমরা এক উত্তেজক টেস্ট সিরিজ শেষ করেছি। ক্রিকেট মাঠে মহান কুমার সাঙ্গাক্কারার নৈপুণ্য দেখতে পারা থেকে আমরা সকলেই বঞ্চিত হবো। আমরা নিজেদের ঘনিষ্ঠভাবে জড়িত নিরাপত্তা সংক্রান্ত স্বার্থকে মানি এবং একে অপরের উদ্বেগের বিষয়গুলি সম্পর্কে সজাগ থাকার প্রয়োজনীয়তার কথাও স্বীকার করি। আমাদের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতায় নিজেদের দায়বদ্ধতার প্রতি আস্থার কথা আমরা উভয়েই নতুন করে স্বীকার করেছি। সন্ত্রাসের মোকাবিলায় আমরা সহযোগিতা বাড়াবো এবং আমাদের নৌ-এলাকার প্রতিবেশী সুলভ সুরক্ষা ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার জন্য একসঙ্গে কাজ করবো। প্রতিরক্ষা প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে শ্রীলঙ্কার আমাদের বৃহত্তম অংশীদার আর আমরা এই ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রসার ঘটানোর কাজ চালিয়ে যাবো। প্রধানমন্ত্রী উইক্রমাসিংহে এবং আমি মৎস্যজীবীদের বিষয়টিও আলোচনা করেছি। দু’পক্ষের মৎস্যজীবীদের সঙ্ঘ ও সমিতিগুলি এ ব্যাপারে সমাধানসূত্র খুঁজতে তাঁদের প্রচেষ্টা চালিয়ে যাবে বলে আমরা একমত হয়েছি। আমি ওঁকে একথা জানিয়েছি যে, এটি মানবিক বিষয় হিসেবে দেখা উচিত, জীবিকা ও জীবনযাত্রার ওপর যার প্রভাব পড়ে। আমরা ভারতীয় ধীবরদের গভীর সমুদ্রে মাছ ধরার জন্য যাওয়ায় উৎসাহিত করতে কী কী পদক্ষেপ নিচ্ছি, সেকথাও আমি ওঁকে জানিয়েছি। পরিশেষে বলি, একে অপরের সাফল্যের ক্ষেত্রে এবং আমাদের অঞ্চলের স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের প্রশ্নে ভারত ও শ্রীলঙ্কার গভীর স্বার্থ আছে। এটা এমনই একটা সম্পর্ক যেটা ভারত ও শ্রীলঙ্কার জনসাধারণের হৃদয় ছুঁয়ে যায়। আমাদের দুই দেশের জন্য এটা সমরকৌশলগত দিক থেকেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রপতি শ্রী সিরিসেনা এবং প্রধানমন্ত্রী শ্রী উইক্রমাসিংহে’কে সঙ্গে নিয়ে আমরা ভবিষ্যতের দিকে অত্যন্ত আশাব্যঞ্জকভাবে তাকিয়ে দেখতে পারি। কোল্লামে প্রধানমন্ত্রী ৬৬ নম্বর জাতীয় সড়কের ওপর কোল্লাম বাইপাসের উদ্বোধন করবেন। দুই লেনের ১৩ কিলোমিটার দীর্ঘ এই বাইপাস নির্মাণে ৩৫২ কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে। এর মধ্যে অষ্টমুদি হ্রদের ওপর ১৫৪০ মিটার দীর্ঘ তিনটি সেতু রয়েছে। নতুন এই বাইপাস চালু হওয়ার ফলে আলাপুঝা এবং তিরুবনন্তপুরমের মধ্যে যাতায়াতের সময় এবং কোল্লাম শহরে যানজটের সমস্যাও কমবে। তিরুবনন্তপুরমে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিখ্যাত পদ্মনাভস্বামী মন্দির পরিদর্শন করবেন। তিনি সেখানে পর্যটকদের সুবিধার্থে কিছু ব্যবস্থার সূচনা করে একটি ফলক উন্মোচন করতে পারেন। এই নিয়ে প্রধানমন্ত্রী তৃতীয় বারের জন্য কোল্লাম সফরে যাবেন। ২০১৫ সালের ডিসেম্বর মাসে প্রথম এই শহরে এসে তিনি আর শঙ্করের মূর্তি উন্মোচন করেছিলেন। মুম্বাই-এশনিবার কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের শিলান্যাস করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। প্রকল্পগুলির মধ্যে ছিল – দুটি মেট্রো লাইন, মুম্বাই-এর সঙ্গে সমুদ্রবন্দরসংযোগ, মুম্বাই নগর পরিবহণ প্রকল্পের তৃতীয় পর্যায় এবং দুটি উড়াল পথ। শিলান্যাসঅনুষ্ঠানের আগে মুম্বাই উপকূল বরাবর আরব সাগরে ছত্রপতি শিবাজী মহারাজ স্মৃতিসৌধেরজন্য জল পূজা করেন তিনি। মুম্বাই-এরবান্দ্রা কুরলা কমপ্লেক্সে এক বিরাট জনসমাবেশে ভাষণদানকালে প্রধানমন্ত্রী বলেন,সংগ্রামের মুহূর্তেও সুপ্রশাসনের আলোকশিখাকে উজ্জ্বল রেখেছিলেন তিনি। শ্রী মোদীবিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে, উন্নয়নই হল যে কোনও সমস্যার সমাধানের পথ যা আমাদের আরওসামনের দিকে এগিয়ে দেয়। ১২৫ কোটি ভারতবাসীর সমবেত বল ও শক্তি যে দেশের উন্নয়নসম্ভব করে তুলতে পারে, সে সম্পর্কে তিনি যথেষ্ট আশাবাদী। প্রধানমন্ত্রীবিশেষ জোর দিয়ে বলেন, জনসাধারণের মধ্যে বিভ্রান্তি ও বাধাদানের চেষ্টা সত্ত্বেওদুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে সংগ্রামকে তাঁরা সমর্থনই জানিয়ে এসেছেন। নয়াদিল্লি, ০২ মার্চ, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আফগানিস্তানের রাষ্ট্রপতি ডঃ আশরফ গনির কাছে সেদেশের বিভিন্ন প্রান্তে তুষার ঝড়ের ফলে জীবনহানি হওয়ায় শোক প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ” তুষার ঝড়ে আফগানিস্তানের বিভিন্ন প্রান্তে জীবনহানি হওয়ায় আমি গভীরভাবে শোকাহত হয়েছি। এই দুঃখজনক ঘটনাটি আমাদের আরও স্পর্শ করে কারণ ভারত ও আফগানিস্তানের মানুষজনের মধ্যে প্রীতি ও বন্ধুত্বের বিশেষ বন্ধন রয়েছে। আমি আপনাকে, শোকাহত পরিবারগুলি ও সমাজ এবং আফগানিস্তানের বাসিন্দাদের প্রতি ভারতীয়দের হৃদয়মিশ্রিত সমবেদনা জানাই। এটি নিশ্চিত জানবেন যে, তাঁরা আমাদের প্রার্থনা ও চিন্তাভাবনায় রয়েছেন। আপনার নেতৃত্ব ও আফগানিস্তানবাসীদের এই বিপর্যয় মোকাবিলা ক্ষমতার ওপর আমার গভীর আস্থা রয়েছে। আমরা আপনাদের প্রয়োজন মতো ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে যে কোনভাবে সাহায্য করতে প্রস্তুত এবং মানুষজনকে পুনরায় জীবন গড়তে সাহায্য করতে ইচ্ছুক। আমি আমার রাষ্ট্রদূতকে বলেছি আপনাদের কি রকম সাহায্য প্রয়োজন সে বিষয়ে আপনার পরামর্শ গ্রহণ করতে”। দশেরাবা পুজোর ছুটির আগেই তাঁদের এই বোনাস মিটিয়ে দেওয়া হবে বলে ঘোষণা করা হয়েছে। কেনিয়ার নাইরোবিতে অনুষ্ঠিত শ্রী কুচি লেভা প্যাটেল সমাজের রজত জয়ন্তীঅনুষ্ঠানে নয়াদিল্লি থেকে এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। পূর্ব আফ্রিকার উন্নয়ন সহ বিভিন্ন কল্যাণমূলক প্রকল্পে কুচি লেভা প্যাটেলসমাজের বিশেষ অবদানের ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। কেনিয়ার স্বাধীনতাসংগ্রামে ভারতীয় সম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথাও তিনি তুলে ধরেন তাঁরএদিনের ভাষণে। দেশের সার্বিক বিকাশ প্রচেষ্টায় বিশেষত, ২০০১-এ কচ্ছ-এর ভূকম্প পরবর্তীপর্যায়ে সেখানে পুনর্গঠন এবং পুনর্বাসন সংক্রান্ত কাজকর্মে কুচি সমাজের অবদানেরকথাও উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন নর্মদার জলকে কচ্ছ-এর দূরদূরান্তএলাকায় পৌঁছে দেওয়ার কাজে তাঁর সরকার যে নিরন্তর প্রচেষ্টা চালিয়েছিল, তার কথাওএদিন উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। কচ্ছ ওজামনগরের মধ্যে প্রস্তাবিত রোরো পরিষেবা চালুর বিষয়টি সম্পর্কেও তিনি সমবেত জনসাধারণকেঅবহিত করেন। তিনি বিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে ভারত এবং আফ্রিকার দেশগুলির সহযোগিতা ক্রমশনিবিড়তর হয়ে উঠছে। সাম্প্রতিককালে, ভারত-আফ্রিকা শীর্ষ সম্মেলন এবং আফ্রিকা উন্নয়নব্যাঙ্কের একটি বৈঠক যে ভারতেই অনুষ্ঠিত হয়েছে একথারও উল্লেখ করেন তিনি। আমি আমার ভাই ও বোনেদের কাছে আবেদন জানিয়ে বলি যে, এই মুহূর্তে একটি মাত্র মন্ত্রেই আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে আর তা হল, ‘শান্তি’। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই প্রত্যেকেটি বিষয়ের সমাধান সম্ভব। গণতন্ত্রের শক্তিতে আমাদের বিশ্বাস রাখতে হবে। আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেই যাবতীয় সমস্যা সমাধানের জন্য আমাদের একসঙ্গে কাজ করে যেতে হবে, যাতে গুজরাটকে এক নতুন উচ্চতায় উন্নীত করা সম্ভব হয়। এটাই হল গুজরাটের ভাই-বোনের কাছে আমার বিনীত আবেদন। ১৯৩০ সালে ঐতিহাসিক লবণ অভিযানের বিভিন্ন ঘটনা ও কাহিনী এই স্মারকের দেওয়ালে বর্ণিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সমগ্র স্মারক চত্বর ঘুরে দেখেন। এই উপলক্ষে এক জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী স্মারক নির্মাণের কাজে যুক্ত সংশ্লিষ্ট সকলকে অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, “এই স্মারক স্বাধীনতা অর্জনের লক্ষ্যে আমাদের দেশের মানুষের সর্বোচ্চ আত্মত্যাগকে স্মরণ করিয়ে দেয়”। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, গান্ধীজীর পরম্পরাকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমাদের সরকার খাদি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত প্রায় ২০০০টি প্রতিষ্ঠানের আধুনিকীকরণ করেছে। এই উদ্যোগের ফলে লক্ষ লক্ষ হস্তশিল্পী ও খাদির সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকরা বিপুল উপকৃত হয়েছেন। খাদি এখন কেবল ফ্যাশনেরই বার্তাবাহক নয়, মহিলা ক্ষমতায়নেরও প্রতীক হয়ে উঠেছে। স্বাধীনতা সংগ্রামে স্বদেশী যেমন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল, তেমনই হস্তশিল্পও দারিদ্র্য দূরীকরণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ হাতিয়ার হয়ে উঠবে। সরকার প্রতি বছর ৭ই আগস্ট দিনটিকে হস্তশিল্প দিবস হিসাবে উদযাপনের কথা ঘোষণা করেছে বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁতবস্ত্রের প্রচার ও প্রসারই এই দিনটি উদযাপনের মূল লক্ষ্য। স্বচ্ছতা বজায় রাখার ব্যাপারে গান্ধীজী যে গুরুত্ব আরোপ করেছিলেন, সে প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এক পরিচ্ছন্ন ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা মহাত্মার আদর্শ ও মূল্যবোধগুলিকে আত্মস্থ করেছি। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের প্রভাব কতটা প্রসারিত হয়েছে, তার খতিয়ান তুলে ধরে শ্রী মোদী জানান, গ্রামাঞ্চলে স্বচ্ছতার পরিধি ২০১৪’র ৩৮ শতাংশ থেকে বেড়ে এনডিএ সরকারের শাসনকালে এ পর্যন্ত ৯৮ শতাংশে পৌঁছেছে। সুরাটে তিনি এক অনুষ্ঠানে অত্যাধুনিক রাসিলাবেন সেবন্তীলাল ভেনাস হাসপাতাল জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। মরক্কোর শিল্প, বিনিয়োগ, বাণিজ্য ও ডিজিটাল অর্থনীতি মন্ত্রকের বৈদেশিক বাণিজ্য বিষয়ক সচিব শ্রীমতী রাকিয়া এদ্দারহাম আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। শ্রীমতী এদ্দারহাম তাঁর দেশের রাজার শুভেচ্ছাবার্তা প্রধানমন্ত্রীকে জ্ঞাপন করেন। মরক্কোর রাজার সঙ্গে সাক্ষাতের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর সুস্বাস্থ্য ও সার্বিক কল্যাণের পাশাপাশি, মরক্কোবাসীর শান্তি ও সমৃদ্ধি কামনা করেন। শ্রীমতী এদ্দারহাম বিগত বছরগুলিতে দু’দেশের সম্পর্ক ও সহযোগিতায়, বিশেষ করে আইনি সহায়তা, সাইবার নিরাপত্তা ও মহাকাশ ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতির কথাও উল্লেখ করেন। অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে স্বাগত জানিয়ে শ্রী মোদী বলেন, ভারত ও বাংলাদেশ দুটি পৃথক রাষ্ট্র হলেও পারস্পরিক সহযোগিতা, সম্প্রীতি ও সমন্বয়ের মধ্য দিয়ে তারা একে অপরের সঙ্গে যুক্ত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর বিশ্বের সর্বত্রই এক পরম শ্রদ্ধেয় ব্যক্তিত্ব। তিন বছর আগে তাজিকিস্তানে গুরুদেব রবীন্দ্রনাথের একটি মূর্তির আবরণ উন্মোচনের সৌভাগ্য তাঁর হয়েছিল বলে স্মৃতিচারণ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, বিশ্বের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে আজও রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর একটি পাঠ্য বিষয়। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকে এক বিশ্ব নাগরিক বলে বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, রবীন্দ্রনাথ চাইতেন ভারতীয়ত্ব অটুট রেখে, ছাত্রছাত্রীরা সারা বিশ্বের উন্নয়নের খবর জানুক। সন্নিহিত গ্রামগুলিতে শিক্ষার প্রসার ও দক্ষতা বিকাশের কাজে উদ্যোগ নেওয়ার জন্য বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। ২০২১ সালে বিশ্বভারতীর শতবর্ষ পূর্তিকালে এই ধরণের গ্রামের সংখ্যা ১০০-তে নিয়ে যাওয়ার জন্য বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষকে অনুরোধ জানান তিনি। একইসঙ্গে এই গ্রামগুলির সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করার কথাও বলেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে এক নতুন ভারত গড়ে তোলার কাজে বিশ্বভারতীর মতো প্রতিষ্ঠানগুলির যে এক গুরুদায়িত্ব রয়েছে একথাও এদিন তাঁর ভাষণে স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষাক্ষেত্রের বিকাশে কেন্দ্রীয় সরকার যে সব উদ্যোগ নিয়েছে, তারও একটি সংক্ষিপ্ত চিত্র তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। শান্তিনিকেতনে বাংলাদেশ ভবনের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে, প্রধানমন্ত্রী এই ভবনটিকে ভারত ও বাংলাদেশের সাংস্কৃতিক সম্পর্কের এক বিশেষ প্রতীক রূপে বর্ণনা করেন। শ্রী মোদী বলেন, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় এবং এই পূণ্য ভূমি, ভারত ও বাংলাদেশ – উভয়েরই স্বাধীনতা সংগ্রামের সাক্ষী। এই দুটি দেশের মিলিত ঐতিহ্যের একটি প্রতীক রূপে বিরাজ করবে এই স্থানটি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবর রহমানকে সমানভাবে শ্রদ্ধার চোখে দেখে ভারত ও বাংলাদেশ। আবার, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বোস, স্বামী বিবেকানন্দ এবং মহাত্মা গান্ধীও সমানভাবে শ্রদ্ধার আসনে অধিষ্ঠিত ভারত ও বাংলাদেশে। এই প্রসঙ্গেরই সূত্র ধরে শ্রী মোদী বলেন, গুরুদেব রবীন্দ্রনাথ যতটা ভারতবর্ষের, ঠিক ততটাই বাংলাদেশেরও। রবীন্দ্রনাথের বিশ্ব মানবতার বাণী প্রতিফলিত হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকারের ‘সব কা সাথ সব কা বিকাশ’ নীতির মধ্যেও। সন্ত্রাস ও নিষ্ঠুরতার বিরুদ্ধে জেহাদ ঘোষণার যে সঙ্কল্প গ্রহণ করেছে ভারত ও বাংলাদেশ, তা ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেও অনুপ্রাণিত করে যাবে বাংলাদেশ ভবনের মাধ্যমে। গত বছর নয়াদিল্লিতে ভারতীয় সেনাদের যেভাবে সম্মানিত করা হয়েছিল বাংলাদেশের পক্ষ থেকে, সেকথাও এদিন স্মরণ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ভারত ও বাংলাদেশের পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে গত কয়েক বছর ধরে এক স্বর্ণ যুগের আবির্ভাব ঘটেছে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। স্থল সীমান্তের মতো একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের নিষ্পত্তি এবং দু’দেশের মধ্যে অন্যান্য সংযোগ ও যোগাযোগ প্রকল্পগুলির কথাও প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি। ভারত ও বাংলাদেশ – দুটি দেশেরই লক্ষ্য অভিন্ন এবং সেই লক্ষ্য পূরণের জন্য দুটি দেশ একইভাবে কাজ করে চলেছে বলে উল্লেখ করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, পার্বত্য ও আদিবাসী অধ্যুষিত অঞ্চলগুলির ৫ হাজার থেকে ১৫ হাজার লোকবসতিপূর্ণ এলাকাগুলিকে এই প্রকল্পের আওতায় নিয়ে আসা হবে। এই গ্রামগুলিকে চিহ্নিত করার কাজে পল্লী উন্নয়ন মন্ত্রক এক বৈজ্ঞানিক প্রক্রিয়ার আশ্রয় গ্রহণ করবে যার মধ্যে বিভিন্ন অঞ্চলের ভৌগোলিক, অর্থনৈতিক ও পর্যটন সংক্রান্ত সম্ভাবনা খতিয়ে দেখা হবে। এছাড়াও, ঐ স্থানগুলিতে কোনরকম ধর্মীয় ঐতিহ্য বা তাৎপর্য রয়েছে কিনা এবং পরিবহণ সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধাই বা কিরকম সে সম্পর্কেও খোঁজখবর নেওয়া হবে। এই মিশনের আওতায় দেশে ৩০০টি গুচ্ছ গ্রাম গড়ে তোলা হবে আগামী তিন বছরের মধ্যে। এই সমস্ত গুচ্ছ গ্রাম গড়ে তুলতে সরকারি অন্যান্য প্রকল্প থেকেও অর্থ যোগানের ব্যবস্থা রাখা হবে। প্রকল্পের আওতায় প্রস্তাবিত উন্নয়নকে সর্বোচ্চ মাত্রায় নিয়ে যাওয়ার জন্য ১৪টি বিষয়কে চিহ্নিত করা হয়েছে। এই সমস্ত গুচ্ছ গ্রাম গড়ে তোলার জন্য কর্মপরিকল্পনা রচনার দায়িত্ব দেওয়া হবে রাজ্যগুলিকে। মিশনের কাজ যাতে সুষ্ঠুভাবে রূপায়িত হ্য় তা সম্ভব করে তুলতে রাজ্য ও কেন্দ্র উভয় পর্যায়েই গড়ে তোলা হবে প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা। এই প্রকল্পটি রূপায়িত হলে শহরাঞ্চলের সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে যাবে দেশের বিভিন্ন গ্রাম এলাকায়। ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা বাণিজ্য ফোরামে আপনাদের সকলের সঙ্গে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আমাদের সঙ্গে দক্ষিণ আফ্রিকার মাননীয় রাষ্ট্রপতিকে পেয়ে আমরা সম্মানিত। এটা খুবই আনন্দের বিষয় যে আমরা আপনাকে আগামীকাল আমাদের ৭০তম সাধারণতন্ত্র দিবসের শোভাযাত্রায় সম্মানিত অতিথি হিসেবে পাচ্ছি। বর্তমানে আমাদের অংশীদারিত্ব এক অভিন্ন ও সমৃদ্ধ ভবিষ্যৎ গড়ে তোলার সঙ্গে যুক্ত যা, মাদিবা ও মহাত্মার স্বপ্নগুলির বাস্তবায়ন ঘটায়। আমাদের দুই দেশের মানুষের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য আমরা আরও বেশি সহযোগিতা ও সম্পর্ক গড়ে তুলতে চাই। আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সূচনা ২২ বছর আগে লালকেল্লা ঘোষণাপত্র থেকে। আমার দৃঢ় বিশ্বাস যে, পুরনো দুই বন্ধু ও অংশীদার দেশের মধ্যে নিরন্তর আলাপ-আলোচনা প্রায় সব ক্ষেত্রেই আমাদেরকে আরও কাছাকাছি নিয়ে এসেছে। অবশ্য, বাণিজ্যিক লেনদেনের ক্ষেত্রে আরও অনেক সম্ভাবনা রয়েছে। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন ভাইব্র্যান্ট গুজরাট সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার অংশগ্রহণকে স্বাগত জানিয়েছি। গত সপ্তাহে আয়োজিত ভাইব্র্যান্ট গুজরাট সম্মেলনে দক্ষিণ আফ্রিকার প্রতিনিধিরা বিপুল সংখ্যায় যোগ দিয়েছিলেন। এবারের সম্মেলনে ‘আফ্রিকা দিবস’ নামে পৃথক একটি দিন ধার্য ছিল। দুই দেশের মধ্যে সম্পর্কের এই গভীরতা আমরা সাধারণভাবে যা অনুভব করি তার থেকে অনেক বেশি। আমাদের দ্বিপাক্ষিক অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বও অত্যন্ত নিবিড়। আপনারা সকলেই জানেন বর্তমানে ভারতের অর্থ ব্যবস্থা ২.৬ ট্রিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে, যা বিশ্বের দ্রুততম বিকাশশীল প্রধান অর্থনীতিগুলির অন্যতম একটি। আমরা বিশ্বের পঞ্চম বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে ওঠার লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছি। সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সর্বশেষ প্রতিবেদনে ভারত বিগত চার বছরে ৬৫ ধাপ উন্নতি করে ৭৭তম স্থানে পৌঁছেছে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের অন্য একটি সংস্থার তালিকায় ভারত প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অন্যতম আকর্ষণীয় দেশ হয়ে উঠেছে। কিন্তু এসব সত্ত্বেও আমরা সন্তুষ্ট নই। আমরা প্রায়শই অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় পরিবর্তন ও সংস্কারের কাজ করে চলেছি। মেক ইন ইন্ডিয়া, ডিজিটাল ইন্ডিয়া, ও স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়ার মতো আমাদের বিশেষ কর্মসূচিগুলি বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। আমাদের সরকার ১৩০ কোটি মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে নিরন্তর কাজ করে চলেছে। দক্ষিণ আফ্রিকায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে আপনার প্রয়াসগুলির আমরা সাফল্য কামনা করি। আগামী তিন বছরে ১০ লক্ষের বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগ গড়ে তোলার যে উদ্যোগ আপনি নিয়েছেন, আমি তার সাফল্য কামনা করি। দক্ষিণ আফ্রিকায় আমাদের বিনিয়োগ ক্রমশ বাড়ছে। ১০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগের ফলে সেখানে ২০ হাজারেরও বেশি কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হবে। মৈত্রী দেশ হিসেবে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে নীতিগত সংস্কার ক্ষেত্রে তার অভিজ্ঞতা বিনিময় করতে পারলে খুশি হবে। নতুন ভারত গড়ে তোলার যে উদ্যোগ আমরা নিয়েছি, সে ব্যাপারে আমি আপনাকে আশ্বস্ত করতে চাই যে এই নতুন ভারতে বিশেষ করে, খাদ্য ও কৃষি প্রক্রিয়াকরণ, খনন, প্রতিরক্ষা, আর্থিক প্রযুক্তি, বিমা ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে সব ধরণের সুযোগ-সুবিধা থাকবে। একইভাবে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকার সঙ্গে নতুন শিল্প স্থাপন, স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও ওষুধ শিল্প, জৈব প্রযুক্তি, তথ্যপ্রযুক্তি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে আগ্রহী। সম্প্রতি চালু হওয়া গান্ধী ম্যান্ডেলা দক্ষতা প্রতিষ্ঠানের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকার দক্ষতা প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রে অংশীদার হয়ে উঠতে পেরে আমরা আনন্দিত। দক্ষতা প্রশিক্ষণের এই উদ্যোগে সে দেশের যুবসম্প্রদায়ের ক্ষমতায়ন ঘটবে। আমাদের দুই দেশের মধ্যে রত্নালঙ্কার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ সহযোগিতা গড়ে উঠতে পারে। সরাসরি হীরে সংগ্রহের ব্যাপারে দুই দেশ নতুন নতুন পন্থা-পদ্ধতি খুঁজে বের করতে পারে। হীরে সংগ্রহ ব্যবস্থায় পারস্পরিক এই উদ্যোগ, দুই দেশের ক্রেতা-বিক্রেতাদের খরচ সাশ্রয় করবে। আন্তর্জাতিক সৌর জোটের মাধ্যমে দক্ষিণ আফ্রিকা ভারতের নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তিক্ষেত্রে অংশগ্রহণ করতে পারে। ব্যবসায়ী ও পর্যটকদের জন্য ভিসা ব্যবস্থার নিয়মনীতিতে সরলীকরণ এবং সরাসরি যোগাযোগ দুই দেশের বাণিজ্য বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা অংশীদারিত্বের এমন অনেক সম্ভাবনা রয়েছে, যা এখনও কাজে লাগানো যায়নি। আমাদের দুই দেশের মানুষের স্বার্থে অভিন্ন অগ্রগতি ও সমৃদ্ধির জন্য এক নতুন যুগের সূচনা করতে আমরা একযোগে কাজ করতে পারি। আপনার এই সফর দুই দেশের সম্পর্ককে আরও এগিয়ে নিয়ে যেতে অনেক সুযোগ তৈরি করে দেবে। অভিন্ন এই উদ্যোগগুলিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে কাজ করতে আমি অঙ্গীকারবদ্ধ। লাল বাহাদুরশাস্ত্রীজিকে তাঁর জন্মজয়ন্তীতে স্মরণ করছি|” প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১২ ডিসেম্বর নতুন দিল্লিতে চতুর্থ পার্টনার্স ফোরামের সূচনা করবেন। “শ্যামজি কৃষ্ণ ভার্মার জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে স্মরণ করিআমি। স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর বিশিষ্ট অবদানের স্মৃতি আজও আমাদের হৃদয়ে সদাজাগরূপরয়েছে। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বিশিষ্ট ব্যক্তিদের এক সমাবেশে ভাষণ দেবেন। দশম শিখগুরু – গুরু গোবিন্দ সিং তাঁর আদর্শ ও শিক্ষার মাধ্যমে অগণিত মানুষের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে উঠেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী ২০১৭-র ৫ জানুয়ারি পাটনায় শ্রী গুরু গোবিন্দ সিং জী মহারাজের ৩৫০তম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছিলেন। এই উপলক্ষে তিনি একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেছিলেন। শ্রী মোদী তাঁর ভাষণে গুরু গোবিন্দ সিং জী যে খালসা ভাবাদর্শ এবং ভারতের বিভিন্ন অংশের সঙ্গে যুক্ত পাঁচটি পঞ্চ-প্রয়াসের মাধ্যমে কিভাবে দেশকে এক জোট করার অভিনব প্রয়াস গ্রহণ করেছিলেন, সেকথা উল্লেখ করেন। গুরু গোবিন্দ সিং জী তাঁর শিক্ষাদর্শের জন্য জ্ঞানকেই প্রধান হাতিয়ার করেছিলেন বলেও প্রধানমন্ত্রী অভিমত প্রকাশ করেন। সমাজের দুর্বলতর শ্রেণীর মানুষের স্বার্থে গুরু গোবিন্দ সিং – এর সংগ্রামকে স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী গত ৩০ ডিসেম্বর বেতার অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’ – এ বলেছিলেন, গুরু গোবিন্দ সিং বিশ্বাস করতেন মানবজাতির দুঃখ, কষ্ট, যন্ত্রণা দূর করাই সর্বোত্তম সেবা। গুরু গোবিন্দ সিং জী-র বীরত্ব, আত্মত্যাগ ও আন্তরিকতারও প্রশংসা করেন শ্রী মোদী। পাঞ্জাবের লুধিয়ানায় ২০১৬-র ১৮ অক্টোবর আয়োজিত জাতীয় অতিক্ষুদ্র, ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ পুরস্কার প্রদান অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী, মানুষ সমগ্র মানবজাতিকে এক বলে মনে করবে – কোনও ব্যক্তি শ্রেষ্ঠ বা হীন নয়, এমনকি কেউই স্পর্শনীয় বা অস্পৃশ্য নয় – গুরু গোবিন্দ সিং – এর এই বাণী আজও প্রাসঙ্গিক বলে মন্তব্য করেন। গুজরাটে সাবরমতী আশ্রমের শতবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে আজ যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখতে গিয়ে তিনি বলেন, বিশ্ব আজ যে সমস্ত চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন, তার মোকাবিলা করার মতো শক্তি নিহিত রয়েছে মহাত্মা গান্ধীর চিন্তাদর্শের মধ্যে। প্রধানমন্ত্রীবলেন, সমাজবদ্ধ জীব হিসেবে আমাদের সকলেরই উচিৎ ইতিহাসের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করেচলা। স্বচ্ছতা,অর্থাৎ পরিচ্ছন্নতা রক্ষা প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিকে আমাদেরউচিৎ একটি দৈনন্দিন অভ্যাস হিসেবে গ্রহণ করা। তাহলে সেটিই হবে ২০১৯ সালে মহাত্মাগান্ধীর সার্ধ শত জন্মবার্ষিকীতে আমাদের প্রকৃত শ্রদ্ধার্ঘ্য। এদেশেই জন্মগ্রহণ করেছেন মহাত্মা গান্ধী। গো-রক্ষার কর্তব্য আমাদের অবশ্যই পালনকরতে হবে। তবে তার অর্থ এই নয় যে গো-ভক্তি বা গো-পুজনের নামে ব্যক্তি হত্যাকেসমর্থন জানাতে হবে। নয়া দিল্লি: স্বামী আত্মস্থানন্দজি’র প্রয়াণে শোক জ্ঞাপনকরলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মার্কিন পেশাদার মুষ্টিযোদ্ধা মহম্মদ আলির প্রয়াণে শোক যাপন করেছেন। সরকারের উন্নয়নমূলক বিভিন্ন কাজের খতিয়ান তুলে ধরে শ্রী মোদী বলেন, সংখ্যাগরিষ্ঠ একটি সরকারই সাহসী সিদ্ধান্ত নিতে পারে।এমনকি, দেশের সার্বিক উন্নয়নেও অবাধে কাজ করতে পারে। “আপনারাই যেহেতু আমাদের সংখ্যাগরিষ্ঠ বানিয়েছেন, তাই আমরা গুরুত্বপূর্ণ ও সংস্কারমূলক সাহসী পদক্ষেপ নিতে সক্ষম হয়েছি” মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী জানান, বিগত সরকারগুলির মতো বর্তমান এনডিএ সরকারও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের স্বার্থে কাজ করেছে। ইউপিএ সরকারের সঙ্গে তাঁর সরকারের তুলনা করে শ্রী মোদী বলেন, “আমাদের শাসনকালের চার বছরে, আমরা ১ কোটি ৩০ লক্ষ গৃহ নির্মাণ করেছি।ইউপিএ শাসনকালে ২৫ লক্ষ গৃহ নির্মাণ হয়েছে”। তিনি আরও বলেন, “এখন পাসপোর্ট কার্যালয়ের সংখ্যা ৪০০-রও বেশি।২০১৪-তে এই সংখ্যা ছিল কেবল ৮০। স্বাধীনতা সংগ্রামে সুরাটের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকার কথা স্মরণ করে শ্রী মোদী আশা প্রকাশ করেন, আগামী এক দশকের মধ্যেই বিনিয়োগের অনুকূল বাতাবরণ গড়ে তুলে এই শহর বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বিকাশশীল শহর হয়ে উঠবে। কলকাতায় একটি নির্মীয়মান উড়ালপুল ভেঙে পড়ার ঘটনায় উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৃহস্পতিবার কথা বলেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রী মোদী বলেন,সমর শিক্ষার্থী বাহিনীর সদস্যরা ভারতের ভবিষ্যৎ সম্পর্কে আমাদের মধ্যে আস্থা ওআত্মবিশ্বাস গড়ে তোলেন যা দেশের যুবসম্প্রদায়ের বল ও শক্তি সম্পর্কে আমাদের গর্বিতকরে। স্বচ্ছতা তথাপরিচ্ছন্নতা রক্ষার কাজে সমর শিক্ষার্থী বাহিনীর ভূমিকারও বিশেষ প্রশংসা করেনপ্রধানমন্ত্রী। নয়াদিল্লি, ২ এপ্রিল, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী, সরকারের সব দপ্তরের সচিবদের সঙ্গে তাঁদের দপ্তরের কাজকর্ম নিয়ে আলোচনা করেন। নতুন দিল্লির ৭ রেসকোর্সের লনে এক আলাপচারিতায় প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সচিবদের কাজকর্মের প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গত এক বছরে সচিবরা, তাঁদের সংশ্লিষ্ট বিভাগে উল্লেখযোগ্য ভূমিকা পালন করেছেন। বিশেষত, কয়লা ব্লকের বন্টন প্রক্রিয়া এবং প্রধানমন্ত্রী জন ধন যোজনার সাফল্যের জন্য সংশ্লিষ্ট বিভাগের সচিবদের প্রধানমন্ত্রী ভূয়ষী প্রশংসা করেন। নিজেদের মধ্যে নিয়মিত আলোচনা করে সিদ্ধান্ত গ্রহণের প্রক্রিয়াকে ত্বরান্বিত করার জন্য প্রধানমন্ত্রী উপস্থিত সচিবদের প্রতি আহ্বান জানান। তিনি বলেন, সচিবদের নিজেদের মধ্যে যেন তথ্য আদানপ্রদানের ক্ষেত্রে কোনো ফাঁক না থাকে। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, নিরপেক্ষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ ও তা বাস্তবায়িত করার ক্ষেত্রে সরকারি অফিসারদের পূর্ণ স্বাধীনতা থাকা উচিত। অর্থমন্ত্রী শ্রী অরুণ জেটলি, নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানগারিয়া, ক্যাবিনেট সচিব অজিত শেঠ, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরের প্রধান সচিব নীপেন্দ্র মিশ্র এই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন। ভারতেরভূ-সমলয় উপগ্রহ জিএসএলভি-এফ০৫-এর সফল উৎক্ষেপণের জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থাইসরো’র বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এইউপলক্ষে এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “আমাদের মহাকাশ কর্মসূচির দৃষ্টান্তমূলক সাফল্যেরজন্য আমরা গর্বিত। ইনস্যাট-৩ ডি আর – এর সফল উৎক্ষেপণের মুহূর্তটি আমাদের কাছেখুবই আনন্দদায়ক। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বড়দিন উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা দণ্ডিত ব্যক্তিদের হস্তান্তরনিয়ে ভারত ও এস্তোনিয়ার মধ্যে একটি চুক্তির স্বাক্ষর ও অনুসমর্থন করার জন্যঅনুমোদন দিল| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও উজবেকিস্তানের মধ্যে ই-প্রশাসনিক ক্ষেত্রে সহযোগিতার প্রসারে স্বাক্ষরিত সমঝোতাপত্রে কর্মপরবর্তী অনুমোদন মিলেছে। আমরা দারিদ্র্য দূরীকরণে সফল হই। চিনের কমিউনিস্ট পার্টির পলিটব্যুরো সদস্য তথা সাংহাইয়ের পার্টি সেক্রেটারি মিঃ হ্যান ঝেং বৃহস্পতিবার সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। শ্রী মোদী গত বছর তাঁর চিন সফরকালে সাংহাইতে মিঃ হ্যান ঝেং-এর সঙ্গে বৈঠকের স্মৃতিচারণা করেন। আগামী ৪ জুন থেকে ৮ জুন পর্যন্ত আফগানিস্তান, কাতার, স্যুইজারল্যান্ড, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং মেক্সিকো সফর করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এ সম্পর্কে তাঁর ফেসবুক অ্যাকাউন্টের কয়েকটি পোস্টে প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আগামীকাল শুরু হচ্ছে আমার আফগানিস্তান সফর। হেরাটে আফগানিস্তান-ভারত মৈত্রী বাঁধের উদ্বোধনে আমি যোগ দেব প্রেসিডেন্ট আশরফ ঘানির সঙ্গে। মানুষে-মানুষে সংযোগ, জ্বালানি, বাণিজ্য এবং বিনিয়োগের ক্ষেত্রে অংশীদারিত্বের মধ্য দিয়ে আমাদের মৈত্রীর ঐতিহাসিক বন্ধনের শিকড় যে আরও গভীরতর হয়ে উঠেছে তা আরও ব্যাপ্তি ও প্রসার লাভ করবে আমার এই সফরকালে। আমাদের বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সহযোগিতার পূর্ণ সম্ভাবনার সদ্ব্যবহারের উদ্দেশ্যে আমি আলোচনায় মিলিত হব কাতারের বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দের সঙ্গেও। আমাদের দ্বিপাক্ষিক তথা বহুধা প্রসারিত সহযোগিতাকে আরও গভীরে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে আমি আলোচনায় মিলিত হব প্রেসিডেন্ট স্নেডার-আম্মানের সঙ্গে। জেনেভায় আমি মিলিত হব বিশিষ্ট বাণিজ্যিক কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে। অর্থনীতি ও বিনিয়োগের সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করা আমাদের লক্ষ্য। সিইআরএন-এআমি সাক্ষাৎ করব ভারতীয় বিজ্ঞানীদের সঙ্গেও। মানবজাতির সেবায় বিজ্ঞানের নতুন নতুন ক্ষেত্র উদ্ভাবনের লক্ষ্যেতাঁদের অবদানে ভারত গর্বিত। মার্কিন কংগ্রেসের এক যৌথ সভায় আমি ভাষণ দেব আগামী ৮ জুন। মার্কিন কংগ্রেস ও সেনেটের সভায় বক্তব্য রাখতে আমাকে আমন্ত্রণ জানানোর জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই অধ্যক্ষ পল রিয়ানকে। ভারত-মার্কিন বলিষ্ঠ সম্পর্ক থেকে শুধুমাত্র এই দুটি জাতিই নয়, লাভবান হবে সমগ্র বিশ্বই। পরস্পরের সঙ্গে অভিজ্ঞতা বিনিময় করব আমরা। ৩০ বছরের ব্যবধানে এই প্রথম অনুষ্ঠিত হতে চলেছে প্রধানমন্ত্রী পর্যায়ে দ্বিপাক্ষিক মেক্সিকো সফর। কিন্তু অন্যান্য দেশের বরাত পাওয়ার ক্ষেত্রে এতদিন তাদের মূল প্রতিবন্ধকতা ছিল আর্থিক যোগানের সীমাবদ্ধতা। আমেদাবাদ পুরনিগম নির্মিত ৭৮ মিটার উচ্চতা বিশিষ্ট এই হাসপাতালটিতে ১ হাজার ৫০০টি রোগি-শয্যা সহ আধুনিক সুযোগ-সুবিধা ও এয়ার অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এই হাসপাতালের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা ঘুরে দেখেন। বিশ্বমানের হাসপাতাল নির্মাণে আমেদাবাদ পুরনিগমের ভূমিকার উচ্ছসিত প্রশংসা করে বলেন, ‘আমেদাবাদের সর্দার বল্লভভাই প্যাটেল চিকিৎসা বিজ্ঞান ও গবেষনা প্রতিষ্ঠানটি দেশের অন্যান্য সরকারি হাসপাতালগুলির কাছে আদর্শ বা মডেল হয়ে উঠবে’। ৭৫০ কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত ১৮ তল বিশিষ্ট এই হাসপাতালটিতে সুলভ মূল্যে বিশ্বমানেরচিকিৎসা পরিষেবা পাওয়া যাবে। দ্রুত নতুন হাসপাতাল গড়ে তোলা হচ্ছে, চিকিৎসক ও আধা-চিকিৎসক কর্মীর চাহিদা বাড়ছে এবং এরফলে স্বাস্হ্য পরিচর্যা ক্ষেত্রে যুবক-যুবতীদের জন্য কর্মসংস্হানের নতুন নতুন সুযোগ সৃষ্টি হচ্ছে’। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সকলের জন্য সমান সুযোগ-সুবিধা প্রদানে সরকার অঙ্গিকারবদ্ধ এবং সাধারণ শ্রেণীভুক্ত দরিদ্র মানুষের স্বার্থে ১০ শতাংশ সংরক্ষণ এই লক্ষ্যেই একটি পদক্ষেপ। সাধারণ শ্রেণীভুক্ত দরিদ্র মানুষের ১০ শতাংশ সংরক্ষণের লক্ষ্যপূরণে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির আসন সংখ্যা ১০ শতাংশ বাড়ানো হচ্ছে। দেশের হাতে গোনা কয়েকটি পুর নিগমে বিশ্ব মানের এ ধরণের স্বাস্হ্য পরিষেবা ব্যবস্হা প্রদানে এগিয়ে এসেছে। আমেদাবাদের মহানাগরিক হিসাবে সর্দার প্যাটেলর ভূমিকার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাস্হ্য, অনাময় এবং পরিস্কার পরিছ্ন্নতার ক্ষেত্রে তাঁর প্রয়াস দৃষ্টান্ত হয়ে রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বর্তমানে দু’দিনের সফরে গুজরাটে রয়েছেন। ঐ রাজ্যে তাঁর সফরসূচিসম্পর্কে কয়েকটি ট্যুইট বার্তায় বুধবার তিনি বলেছেন : “আগামীকালথেকে আমি দু’দিনের জন্য গুজরাট সফর করব। আমেদাবাদ, রাজকোট, মোদাসা এবং গান্ধীনগরেআমার কর্মসূচি রয়েছে। প্রথম দুটিকর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে সাবরমতী আশ্রমে। আশ্রমের শতবার্ষিকী অনুষ্ঠানে যোগদেওয়ার জন্য আমি বিশেষভাবে আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন দিল্লীতে শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) পুনর্জাগরনের জন্য শিক্ষাক্ষেত্রে নেতৃত্বদান সংক্রান্ত সম্মেলনে ভাষন দেন। শিক্ষার গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে স্বামী বিবেকানন্দ আন্মবিশ্বাস, চরিত্র গঠন এবং মানবিক মূল্যবোধের প্রতি যে গুরুত্ব দিয়েছিলেন, প্রধানমন্ত্রী সে কথা স্মরণ করেন। তিনি আরও বলেন, বর্তমানে শিক্ষার অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হল উদ্ভাবন। শিক্ষা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বাবাসাহেব ভীমরাও আম্বেদকর, দীনদয়াল উপাধ্যায় এবং ডঃ রাম মনোহর লোহিয়ার কথাও স্মরণ করেন। শ্রী মোদী বলেন, বর্তমানে কোনও দেশ বা কোনও ব্যক্তি পরস্পরের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে বাঁচতে পারেন না। ‘বিশ্ব-নাগরিক’ বা ‘ভূবনগ্রাম’ হিসেবে চিন্তা-ভাবনা করার গুরুত্বের ওপর তিনি জোর দেন। “আমরা আজ যে সমস্ত সমস্যার সম্মুখীন, তার সমাধান খুঁজে বের করতে বিশ্ববিদ্যালয় ও কলেজগুলিকে একযোগে কাজ করার ব্যাপারে” তিনি পরামর্শ দেন। উদ্ভাবন ও নতুন আবিস্কারের জন্য শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির মধ্যে যোগসূত্র গড়ে তুলতে হবে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। উদ্ভাবনের ব্যাপারে শিশুদের উৎসাহ দিতে ‘অটল টিঙ্কারিং ল্যাব’ স্হাপনের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী সমাজের স্বার্থে ভালো মানের শিক্ষক-শিক্ষিকার প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। ডিজিটাল স্বাক্ষরতার প্রসারে বিদ্বান ও ছাত্রছাত্রীদের গুরুত্ব পূর্ণ দায়িত্ব পালনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সহজে জীবনযাপনের মানোন্নয়নে সরকারি কর্মসূচিগুলি সম্পর্কে সচেতনতা প্রসারেও তারা বড় ভূমিকা নিতে পারেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুব সম্প্রদায় ‘ব্র্যান্ড ইন্ডিয়া’কে এক নতুন বিশ্ব পরিচিতি দিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী লে লাদাখের মহাবোধি ইন্টারন্যাশনাল মেডিটেশন সেন্টারকেমহাকরুণা দিবস ২০১৭ উপলক্ষে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক বার্তায়তিনি বলেন, “লে লাদাখের মহাবোধি ইন্টারন্যাশনাল মেডিটেশন সেন্টারকে মহাকরুণা দিবস২০১৭ উপলক্ষে অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা। ভগবান বুদ্ধেরজীবন ও বাণী সেবা, করুণা ও মুক্তির দ্যোতক। অর্থনৈতিকঅগ্রগতির মূল চালিকাশক্তি হল জ্বালানি। অর্থনৈতিক বিকাশের সুফল সমাজের শেষপ্রান্তের ব্যক্তিটির কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে স্থায়ী, নিরন্তর এবং সুলভমূল্যের জ্বালানি শক্তি একান্ত প্রয়োজন। ভবিষ্যতে বহু বছর ধরেই জ্বালানির এক বিশেষউৎস হিসেবে হাইড্রো কার্বন-এর গুরুত্ব অটুট থাকবে। সুতরাং, ‘ভবিষ্যতের জ্বালানিশক্তি রূপে হাইড্রো কার্বন-এর গুরুত্ব, বিকল্প ও চ্যালেঞ্জ’ – এই বিষয়টি আজকেরসম্মেলনের পক্ষে খুবই উপযোগী ও সময়োচিত। ভারত হলবর্তমানে বৃহত্তম গতিতে বেড়ে ওঠা এক বিশ্ব অর্থনীতি। এই অগ্রগতির মূলে রয়েছে বেশকিছু নীতিগত পদক্ষেপ। ভারতের দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক তথা সামাজিক প্রেক্ষিতটিরবিকাশের ওপরই দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে আমাদের নীতিগুলিতে, স্বল্পমেয়াদি কিছুব্যবস্থামাত্র নয়। অর্থনৈতিক বিকাশ ও অগ্রগতিতে আমাদের এই প্রচেষ্টার সুফলও আমরালক্ষ্য করেছি। দ্রততার সঙ্গেঅগ্রগতি ছাড়াও অন্যান্যদের তুলনায় আমাদের অর্থনীতি এখন অনেক বেশি স্থিতিশীল। বিশ্বঅর্থনীতি যখন এক অনিশ্চয়তার মধ্য দিয়ে যাত্রা করছে, ভারত তখন পরিস্থিতির সামালদেওয়ার কাজে যথেষ্ট দক্ষতার পরিচয় দিয়েছে। আন্তর্জাতিকক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যখন মন্দার পরিস্থিতি, ভারতেপ্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সেখানে ২০১৫-১৬ অর্থ বছরে বৃহত্তম বলে প্রমাণিত হয়েছে। ‘ব্যাঙ্কঅফ ইন্টারন্যাশনাল সেটেলমেন্টস্‌’-এর মতে বড় বড় অর্থনীতির তুলনায় ভারতেরব্যাঙ্কগুলির পরিস্থিতি এখন অনেক বেশি স্থিতিশীল। আগামী ২০৪০সালের মধ্যে ভারতীয় অর্থনীতি পাঁচ গুণ বৃদ্ধি পাবে বলে আশা করা হচ্ছে। এক হিসাবেদেখা গেছে, ২০১৩-২০৪০ পর্যন্ত আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে জ্বালানি শক্তির মোট চাহিদাবৃদ্ধির এক-চতুর্থাংশেরই দাবিদার হল ভারত। ২০৪০ সাল নাগাদ ভারতে যে পরিমাণ তেলেরপ্রয়োজন ঘটবে, তা সমগ্র ইউরোপের চাহিদা থেকে অনেক বেশি। পরিবহণপরিকাঠামো বৃদ্ধি পাবে বহুগুণে। বাণিজ্যিক যানবাহনের সংখ্যা ১ কোটি ৩০ লক্ষ থেকে২০৪০ সাল নাগাদ পৌঁছে যাবে ৫ কোটি ৬০ লক্ষে। অসামারিক বিমান পরিবহণক্ষেত্রের অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে পরিবহণ খাতে জ্বালানির চাহিদা ২০৪০ সাল নাগাদবৃদ্ধি পাবে চারগুণ। এ সমস্ত কিছুই জ্বালানি চাহিদার প্রেক্ষিতটিকে সম্পূর্ণ বদলেদেবে। ভারতেরঅগ্রগতিতে হাইড্রো কার্বন-এর গুরুত্ব অব্যাহত থাকবে। দ্রুত বিকাশের সম্ভাবনা একগুরুদায়িত্ব তুলে দিয়েছে ভারতের জ্বালানি ক্ষেত্রটির ওপর। ভারত এবং বিদেশের অনেকেইআজ এখানে অংশগ্রহণ করতে এসেছেন জেনে আমি আনন্দিত। একে অন্যের অভিজ্ঞতা এবংবিশেষজ্ঞদের আলোচনা থেকে উপকৃত হবেন বলে আমি নিশ্চিত। ভারতেরভবিষ্যতের লক্ষ্যে আমার চিন্তাভাবনার সাধারণ বিষয়টি হল জ্বালানি শক্তি, বিশেষত উৎসহিসেবে হাইড্রো কার্বনের গুরুত্ব। দরিদ্র মানুষদের কাছে সুলভে পৌঁছে দেওয়ারলক্ষ্যে জ্বালানির চাহিদা রয়েছে ভারতে। সেই সঙ্গে, জ্বালানি শক্তির দক্ষ ব্যবহারেরপ্রয়োজনীয়তার কথাও আমরা অনুভব করেছি। দায়িত্বশীল এক বিশ্ব নাগরিক হিসাবে জলবায়ুপরিবর্তন ও দূষিত গ্যাস নির্গমনের মোকাবিলায় এবং নিরন্তর ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে আমরাপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্ব অর্থনীতির অনিশ্চয়তার মধ্যে জ্বালানি নিরাপত্তার অন্বেষণেব্যস্ত রয়েছে ভারত। সুলভ জ্বালানিপ্রসঙ্গ দিয়ে আমি শুরু করি। এর ফলে, তাঁদের উৎপাদনশীলতাও ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ৫কোটি পরিবারে রান্নার গ্যাসের সুযোগ পৌঁছে দিতে আমরা সূচনা করেছি ‘উজ্জ্বলা’কর্মসূচির। এই একটি মাত্র উদ্যোগের মধ্য দিয়েই স্বাস্থ্যের উন্নতি, উৎপাদনশীলতাবৃদ্ধি এবং দূষিত গ্যাস নির্গমনের মাত্রা হ্রাস সম্ভব হয়ে উঠবে। মাত্র সাত মাসের মধ্যেই এই কর্মসূচির আওতায় ১ কোটি পরিবারেরান্নার গ্যাসের সুযোগ পৌঁছে দেওয়া হয়েছে। আগামী পাঁচবছরে দেশের ১ কোটি বাড়িতে পাইপ লাইন মারফৎ প্রাকৃতিক গ্যাস পৌঁছে দেওয়ারলক্ষ্যমাত্রা রয়েছে সরকারের। অপেক্ষাকৃতস্বল্পোন্নত পূর্বাঞ্চলের জন্য আমরা একটি নতুন গ্যাস পাইপ লাইন নির্মাণের কাজ শুরুকরে দিয়েছি, যার মাধ্যমে নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে আরও বহুমানুষের কাছে। ২০১৮ সালের মার্চ মাসের মধ্যে ভারতে প্রত্যেকটি গ্রামে যাতেনিশ্চিতভাবেই বিদ্যুৎ-এর সুযোগ পৌঁছে দেওয়া যায়, সেই লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি আমরা। জ্বালানির দক্ষব্যবহার প্রসঙ্গে এবার আসা যাক। ভারতের বাণিজ্যিক পরিবহণ ক্ষেত্রটি বর্তমানেঅত্যন্ত চাপ সহ্য করে চলছে। পণ্যসামগ্রীর এক বৃহৎ অংশ পরিবাহিত হয় সড়ক পথে। তাই,জ্বালানি শক্তির দক্ষ ব্যবহারের লক্ষ্যে আমার সরকার সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দিয়েছেরেল ব্যবস্থার সম্প্রসারণের ওপর। ২০১৪-১৫ এবং ২০১৬-১৭-র মধ্যে রেলে সরকারি মূলধনবিনিয়োগের মাত্রা বৃদ্ধি পেয়েছে ১০০ শতাংশেরও বেশি। ডেডিকেটেড ফ্রেইট করিডরগুলিসম্পূর্ণ করার কাজেও ব্যস্ত রয়েছি আমরা। মুম্বাই ও আমেদাবাদের মধ্যে এক উচ্চ-গতিররেল করিডর বর্তমানে নির্মাণ করা হচ্ছে, যেখানে বিমানের তুলনায় জ্বালানির ব্যবহারহবে দক্ষতর। ব্যবহারিক ক্ষেত্রে যে সমস্ত প্রতিবন্ধকতা ছিল রাজ্যগুলির, তা দূর করতেপরিবহণ এবং দক্ষতা বৃদ্ধির কাজে জিএসটি গতিসঞ্চার করবে। জ্বালানিরমূল্য নির্ধারণ যে একটি স্পর্শকাতর বিষয় সে সম্পর্কে অবগত বিকাশশীল দেশগুলির তেলদপ্তরের মন্ত্রীরা। তা সত্ত্বেও পেট্রোল ও ডিজেলের মূল্যে বি-নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা আমরাচালু করেছি। রান্নার গ্যাসের মূল্য স্থির করে দেয় বাজার। দুর্বল ও মধ্যবিত্তশ্রেণীকে সুরক্ষাদানের লক্ষ্যে ১৬ কোটি ৯০ লক্ষ ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরিভর্তুকি পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা করেছি আমরা। এর ফলে, রান্নার গ্যাসের ভর্তুকিরক্ষেত্রে যাবতীয় ফাঁকফোকর ও অপব্যবহার রোধ করা সম্ভব হয়েছে। এই সমস্ত ব্যবস্থাগ্রহণের মধ্য দিয়েও জ্বালানি ব্যবহারের ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি আমরা সম্ভব করেতুলেছি। জ্বালানি ক্ষেত্রেরচ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় দ্বিতীয় ও তৃতীয় প্রজন্মের জৈব জ্বালানি সম্পর্কে গবেষণাও উন্নয়নেরও যথেষ্ট প্রয়োজন রয়েছে। এবার আমরাদৃষ্টি ফেরাই জ্বালনি নিরাপত্তার দিকটিতে। দেশে তেল ও গ্যাসের উৎপাদন বৃদ্ধিরপশাপাশি আমদানির ওপর নির্ভরশীলতাও আমাদের কমিয়ে আনতে হবে। দেশে হাইড্রোকার্বন উৎপাদনের বিষয়টিকে উৎসাহদানের লক্ষ্যে আমাদের রয়েছে এক শক্তিশালীবিনিয়োগ-বান্ধব নীতিগত কাঠামো। প্রায় দু’দশক আগে জ্বালানি অনুসন্ধানের ক্ষেত্রেলাইসেন্স পদ্ধতি চালু করেছিল ভারত। এর মাধ্যমে ১০০ শতাংশ প্রত্যক্ষ বিদেশিবিনিয়োগের অনুমতি যেমন দেওয়া হয়েছে, অন্যদিকে তেমনই ভারতের প্রধান প্রধানক্ষেত্রগুলিতে এদেশে বিনিয়োগ ও কাজ করার সুযোগ প্রসারিত করা হয়েছে বেসরকারিক্ষেত্রগুলির কাছে। তবে কিছু কিছু সমস্যার কারণে দেশের তেল ও গ্যাস রপ্তানিরবিষয়টি সময়ে সময়ে ব্যাহত হয়েছে। কারণ আমরা মনে করি যে, প্রতিযোগিতার মধ্য দিয়ে আমাদেরবিপণন সংস্থাগুলির দক্ষতা ও কার্যকারিতা বিশেষভাবে বৃদ্ধি পাবে। আমাদের ইতিবাচকবিদেশ নীতি এবং জ্বালানি ক্ষেত্রে দৌত্য প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে আমাদেরসম্পর্ককে আরও নিবিড় করে তুলেছে। দেশের তেল ও গ্যাস সংস্থাগুলি এই সুযোগ গ্রহণ করেসহযোগিতার মধ্য দিয়ে আরও বেশি পরিমাণ তেল আহরণে যুক্ত হবে বিদেশি সংস্থাগুলিরসঙ্গে। সম্প্রতি ৫.৬ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের মাধ্যমে রাশিয়ায় হাইড্রো কার্বন সম্পদঅধিগ্রহণ করা হয়েছে। জ্বালানি ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত ভারতীয় সংস্থাগুলিকে এখনবহুজাতিক সংস্থা হয়ে উঠতে হবে, কাজ করতে হবে ভারত-মধ্যপ্রাচ্য, ভারত-মধ্য এশিয়াএবং ভারত-দক্ষিণ এশিয়া জ্বালানি করিডরগুলির মধ্যে। ভারতেরপুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন বৃদ্ধিতে ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে একগুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে প্রাকৃতিক গ্যাসের। কারণ, ভারতের প্রতিযোগিতামুখিনতার তা বিশেষভাবে সাহায্য করবে। এই ব্যবস্থাআমাদের দক্ষতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রকল্পের সময়োচিত রূপায়ণও নিশ্চিত করে তুলবে। মেধা ওপরিশ্রমের দিক থেকে ভারত বরাবরই অন্যান্যদের কাছে অনুপ্রেরণার দৃষ্টান্ত হয়েউঠেছে। হাইড্রো কার্বনউৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলির কাছে আমি এই বার্তা পৌঁছে দিতে চাইযে, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিতে আপনারা সকলেই স্বাগত। বাণিজ্যিক কাজকর্মকে সহজতরকরে তোলার ক্ষেত্রে আমাদের নিরন্তর প্রচেষ্টাই র‍্যাঙ্কিং-এর মর্যাদায় ভারতকে আরওওপরে নিয়ে যেতে পেরেছে। আমি আপনাদের নিশ্চিতভাবে একথা জানাতে চাই যে, আমাদের রয়েছেএক দৃঢ় অঙ্গীকার এবং দীর্ঘসূত্রিতাকে আমরা রূপান্তরিত করতে চাই সাদর অভ্যর্থনায়। সরকারের পক্ষথেকে সম্ভাব্য সকল রকমের সহযোগিতার আমি আশ্বাস দিতে চাই। সমগ্র ব্যবস্থার খোলনলচে বদলে দেওয়ার জন্যপ্রয়োজন সচল পরিবর্তনের। প্রধানমন্ত্রীবলেন, কেন্দ্রের সহ-সচিবদের এই তিন মাসের কর্মসূচির প্রভাব রয়েছে যথেষ্ট। আজ টাইমস্‌ অফ ইন্ডিয়ায় প্রকাশিত একটি নিবন্ধে সিঙ্গাপুরের প্রধানমন্ত্রীলিখেছেন, ভারত এবং আসিয়ান রাষ্ট্রগুলির মধ্যে যুগ যুগ ধরে চলতে থাকা শিল্প ওবাণিজ্য এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্ক সহযোগিতা প্রসারের ক্ষেত্রকে আরও জোরদার করে তুলতেএক বিশেষ ভূমিকা পালন করেছে। মিঃ লুঙ্গ-এর মতে, আসিয়ান-ভারত সম্পর্কের ২৫তম বর্ষ উদযাপনের মুহূর্তে যেকথা বিশেষভাবে স্মরণীয়, তা হল – দক্ষিণ এশিয়ার সঙ্গে ভারতের সুপ্রাচীন সম্পর্কদু’হাজার বছরেরও বেশি সময়কাল ধরে চলে আসছে। কম্বোডিয়া, মালয়েশিয়া এবং থাইল্যান্ডেরমতো দেশগুলির সঙ্গে ভারতের প্রাচীন বাণিজ্যিক সম্পর্কের কথা আজ সুবিদিত। অসামরিক এবং বাণিজ্যিক বিষয়ে আইনি এবং বিচার-ব্যবস্থা সম্পর্কিত সহযোগিতা চুক্তি কূটনৈতিক, বিশেষ, সেবা সম্পর্কিত এবং সরকারি পাসপোর্টধারীদের ক্ষেত্রে পারস্পরিক ভিসা মকুব সংক্রান্ত চুক্তি স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসার সম্পর্কিত মউ বহির্মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের লক্ষ্যে সহযোগিতা প্রসার সম্পর্কিত মউ ভারতের বিদেশ মন্ত্রকের বৈদেশিক পরিষেবা দপ্তর এবং ওমানের কূটনৈতিক সংস্থার মধ্যে স্বাক্ষরিত মউ ওমানের ডিফেন্স কলেজ সুলতানেট এবং ভারতের ইন্সটিটিউট ফর ডিফেন্স স্টাডিজ অ্যান্ড দ্য অ্যানালিসিস-এর মধ্যে শিক্ষা ও গবেষণা সম্পর্কিত মউ ভারত ও ওমানের মধ্যে পর্যটন সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে মউ ফ্রান্সেরপ্রেসিডেন্টের কূটনৈতিক পরামর্শদাতা মিঃ ফিলিপ এটিয়েন আজ এখানে সাক্ষাৎ করেনভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। প্রতিরক্ষাও নিরাপত্তা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে সম্পর্ককে আরও জোরদার করেতুলতে যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে, সে সম্পর্কে ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে অবহিতকরেন মিঃ ফিলিপ এটিয়েন। শ্রী মোদী২০১৭-র জুন মাসে তাঁর সফল ফ্রান্স সফরের স্মৃতিচারণ করেন। তিনি বলেন, ভারত ওফ্রান্সের কৌশলগত অংশীদারিত্বের দুটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভই হল নিরাপত্তা ও প্রতিরক্ষা।দু’দেশের মধ্যে বিভিন্ন ক্ষেত্রে উদ্যোগ ও কর্মপ্রচেষ্টারসার্বিক প্রসারে সন্তোষপ্রকাশ করেন তিনি। আন্তঃরাজ্য পরিষদের এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে সম্মিলিত আপনাদের সবাইকে স্বাগত জানাই। সমস্ত রাজ্যএবং কেন্দ্রীয় সরকারের নেতৃত্ব একত্রিত হওয়ার এরকম সুযোগ খুব কমই আসে । সাধারণ মানুষের হিতে কথা বলতে, তাঁদের সমস্যাগুলি সমাধানের কথা মাথায় রেখে একসঙ্গে বসেআলাপ আলোচনার মাধ্যমে সিদ্ধান্ত নেওয়ার খাতিরে কো-অপারেটিভ ফেডারেলিজমের এই মঞ্চঅত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই মঞ্চ আমাদের সংবিধান রচয়িতাদের দূরদৃষ্টির পরিচায়ক। সেজন্যে গণতন্ত্র,সমাজ এবং আমাদের রাজ্য-ব্যবস্থাকে পোক্ত করতে, এই মঞ্চকে ভালভাবে কাজে লাগানো উচিৎ” । এই আন্তঃরাজ্যপরিষদ নিশ্চিত ভাবেই কেন্দ্র-রাজ্য সম্পর্ক এবং রাজ্যগুলির পারস্পরিক সম্পর্ক মজবুত করার সবচাইতে বড় মঞ্চ। কিন্তু২০০৬ সালের পর থেকে দীর্ঘকাল এই বৈঠক হয়নি, আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে আমাদের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রদ্ধেয় শ্রী রাজনাথ সিং আবার এই প্রক্রিয়া শুরু করার উদ্যোগ নিয়েছেন। গত একবছরে তিনি দেশের পাঁচটি আঞ্চলিক পরিষদের বৈঠক ডেকেছেন। এইপ্রক্রিয়ায় আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে নানা পর্যায়ে ধারাবাহিক সম্পর্ক উন্নয়নের ফলস্বরূপ আজ আমরা সবাই এখানে মিলিত হতে পেরেছি। কেন্দ্রীয় সরকার আর রাজ্য সরকারগুলি কাঁধে কাঁধমিলিয়ে কাজ করলে তবেই দেশের উন্নয়ন সম্ভব। একা একা যে কারও পক্ষেই কোনও প্রকল্প সফলভাবে বাস্তবায়িত করা কঠিন। এক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় অর্থের যোগানও যথেষ্টগুরুত্বপূর্ণ। চতুর্দশ অর্থ কমিশনের সুপারিশ অনুযায়ী কেন্দ্রীয় কর-এ রাজ্যেরপ্রাপ্য ৩২ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ৪২ শতাংশ করে দেওয়া হয়েছে। অর্থাৎ, এখন রাজ্যগুলি আগের তুলনায় বেশি টাকা পাবে যা তারা নিজেদের প্রয়োজন অনুসারে খরচ করতে পারবে। আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আপনাদের জানাচ্ছি যে ২০১৪-১৫ অর্থবর্ষের তুলনায় ২০১৫-১৬অর্থবর্ষে রাজ্যগুলি ২১ শতাংশ বেশি টাকা পেয়েছে। একইভাবে চতুর্দশ অর্থ কমিশনের কার্যকালের মধ্যে ২ লক্ষ ৮৭ হাজার কোটি টাকা পাবে যা গতবারের তুলনায় অনেক বেশি। কয়লা ছাড়া অন্যান্য খনিগুলির নিলাম থেকে সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলি ১৮ হাজার কোটি টাকা পাবে। এভাবেই CAMPA আইন সংশোধনের মাধ্যমে ব্যাঙ্কে জমা প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকাও রাজ্যগুলির হাতে তুলে দেওয়ার চেষ্টা করা হচ্ছে। রান্নার গ্যাস সরবরাহ আরও বৃদ্ধি পাবে। এর প্রত্যক্ষ প্রভাবে কেরোসিনের চাহিদা কমছে। সম্প্রতি চণ্ডীগড় প্রশাসন নিজেদের শহরকে ‘কেরোসিন মুক্ত এলাকা’ ঘোষণা করেছে। এখনকেন্দ্রীয় সরকার একটি প্রকল্প শুরু করেছে, যার মাধ্যমে যে রাজ্য কেরোসিনের চাহিদা হ্রাস করতে পারবে কেন্দ্র সেই বাবদ সাশ্রয় হওয়া ভর্তুকির ৭৫ শতাংশ টাকা সংশ্লিষ্ট রাজ্যের হাতে তুলে দেবে। সংসদে “-‘আধার ’ আইন ২০১৬ ”পাস হয়ে গেছে । এই আইন প্রণয়নের ফলে আমরা দরিদ্রদের নানা ভর্তুকি কিম্বা অন্যান্য অনেক সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রে সরাসরি নগদহস্তান্তর-এর জন্যে ‘আধার’ ব্যবহার করতে পারবো। ১২৮ কোটি জনসংখ্যার দেশে ইতি মধ্যেই ১০২ কোটি মানুষ ‘আধার’ কার্ড পেয়েছেন। অর্থাৎ, এখন দেশের ৭৯ শতাংশ মানুষের ‘আধার’ কার্ড রয়েছে। আর শুধু প্রাপ্তবয়স্ক নাগরিকদের ধরলে ৯৬ শতাংশের ‘ আধার কার্ড ’ রয়েছে । আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আপনাদের সকলের সাহায্যে এ বছরের শেষে দেশের প্রত্যেক নাগরিককে আমরা ‘আধার কার্ড’ পৌঁছে দিতেপারবো। আজএই সাধারণ ‘ আধার কার্ড ’ নাগরিকদের ক্ষমতায়নের প্রতীক হয়ে উঠেছে। এই ‘ আধার কার্ড ’ সংযোগের মাধ্যমে সরকারি সাহায্য বাভর্তুকি সঠিক ব্যক্তির ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি পৌঁছে দেওয়া যাচ্ছে। ফলে ব্যবস্থায় অনেকটা স্বচ্ছতা এসেছে, হাজার হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় হচ্ছে, যাউন্নয়নের কাজে ব্যয় করা যাচ্ছে। বন্ধুগণ,বাবাসাহেব আম্বেডকর লিখেছিলেন, -“ভারতের মতো দেশে সমাজ সংস্কারের পথ , অনেকটা স্বর্গের পথের মতো অত্যন্ত বন্ধুর ও দুর্গম। আপনি সমাজ সংস্কারের কথাভাবলে আপনার বন্ধু কম আর সমালোচক বেশি পাবেন”। আজও তাঁর লেখা মন্তব্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। সেজন্যে সমালোচনা উপেক্ষা করে,পরস্পরের দিকে সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে আমাদের সমাজ সংস্কারের প্রকল্পগুলি এগিয়ে নিয়েযাওয়ার ক্ষেত্রে জোর দিতে হবে। ইতিমধ্যেই মুখ্যমন্ত্রীদের উপসমিতি নিতি আয়োগে এধরণের বেশ কিছু প্রকল্পের রূপরেখা রচনা করেছে । এবার আন্তঃরাজ্য পরিষদ- এ দ্বিতীয় যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টিনিয়ে আলোচনা হবে , তা হল শিক্ষা । ভারতের সবচাইতে বড় শক্তি আমাদের নবীন প্রজন্ম । ৩০ কোটিরও বেশি শিশুর এখন স্কুলে যাওয়ার বয়স হয়েছে । কিন্তু এখনও শিক্ষার উৎকর্ষ নিয়ে অনেক কিছু করা বাকি । আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় আমাদের সন্তান – সন্ততিরা বাস্তবে কতটা শিক্ষিত হচ্ছে , তা নিয়ে আমাদেরচিন্তা ভাবনা করতে হবে । আমাদের সন্তান – সন্ততিদের শিক্ষারমান উন্নত করতে হলে তাদেরকে শিক্ষার উদ্দেশ্যও বোঝাতে হবে । স্কুলে যাওয়া আর শিক্ষালাভ করা এক কথা নয় । একবিংশ শতাব্দীর অর্থব্যবস্থায় যে ধরণের দক্ষতা ও যোগ্যতার প্রয়োজন, আমাদেরপ্রত্যেকের দায়িত্ব আমাদের নবীন প্রজন্মকে সেরকম দক্ষ ও যোগ্য করে গড়ে তোলা। যাতেতারা যুক্তিসম্মত চিন্তাভাবনা করে, ব্যতিক্রমী চিন্তাভাবনা করে, নিজের কাজেসৃষ্টিশীল হয়, সময়োপযোগী নতুন নতুন উদ্ভাবনের কথা ভাবে। আজ তৃতীয় যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি নিয়ে আমরা আলোচনা করবো তা হল আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা। দেশের আভ্যন্তরীণ নিরাপত্তার সমস্যাগুলি, নানা প্রতিস্পর্ধার মোকাবিলা আমরা কেমন করে করবো, কেমন করে পরস্পরকে সাহায্য করতে পারবো, তা নিয়ে আলোচনা হবে। যথাসময়ে বিপদসংকেত লেনদেন করা ও সদাসতর্ক থাকার প্রয়োজন রয়েছে। আন্তঃরাজ্য পরিষদ-এর এই গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে আমরা খোলামনে সকলের বক্তব্য ও পরামর্শ মনোযোগ সহকারে শোনা ও বোঝার সুযোগ পাই । আশা করি আপনারা আলোচ্য সকল বিষয়ে খোলা মনে নিজেদের মতামত জানাবেন , পরামর্শ দেবেন । আপনাদের পরামর্শ অত্যন্ত মূল্যবান । আমরা যত বেশি নানা গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে সহমত হতে পারবো , নানা সমস্যা দূরীকরণ তত সহজ হবে । শ্রী সলি-র নেতৃত্বে মালদ্বীপের গণতন্ত্র, শান্তি ও সমৃদ্ধিকে আরও সুদৃঢ় হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আশাপ্রকাশ করেছেন। শ্রী সলি তাঁকে শুভেচ্ছা ও শুভকামনার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। সমাজে দুর্বলতর শ্রেণীর মানুষের পরিষেবায় বৃহত্তর স্বার্থে একযোগে কাজ করবেন তথ্য প্রযুক্তি কর্মীরা। সমাজের উন্নয়নে যাঁরা কাজ করতে আগ্রহী, তাঁদের জন্য কাজের সুযোগ করে দেবে এই পোর্টাল। প্রধানমন্ত্রী শিল্প ক্ষেত্রের শীর্ষ নেতাদের সঙ্গে মিলিত হবেন। তথ্য প্রযুক্তি কর্মী ও বৈদ্যুতিন কারিগরি সংস্থার কর্মীদের সমাবেশে তিনি ভাষণ দেবেন। টাউন হল ধাঁচের এক সমাবেশে তিনি আলোচনায় অংশ নেবেন। আগামীকাল নয়াদিল্লির এইম্‌স পরিদর্শনে যাবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি সেখানে প্রবীণ ও বৃদ্ধদের জন্য একটি জাতীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রের শিলান্যাস করবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মুম্বাইয়ে চৈত্য ভূমি পরিদর্শন করেন, সেখানে তিনি ভারতরত্ন ড. বাবাসাহেব আম্বেদকরের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি জানান| প্রধানমন্ত্রী পরে মুম্বাইয়ের ইন্দু মিলস প্রাঙ্গণে ড. বাবাসাহেব আম্বেদকর মেমোরিয়ালের ভিত্তি প্রস্তর স্থাপনের উদ্দ্যেশ্যে ফলক উন্মোচন করেন| বুধবারএখানে সাংবাদিকতায় রামনাথ গোয়েঙ্কা উৎকর্ষ পুরস্কার প্রদান করলেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। অনুষ্ঠানেবক্তব্য রাখতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে স্বাধীনতা সংগ্রামের দিনগুলিতে সংবাদপত্রহয়ে উঠেছিল মতপ্রকাশের এক বলিষ্ঠ মাধ্যম। কাগজে যাঁরা লেখালেখির মাধ্যমে মতপ্রকাশকরতেন, তাঁদের ভয়ে শঙ্কিত থাকতেন ঔপনিবেশিক শাসকরা। প্রয়াতশ্রী রামনাথ গোয়েঙ্কার প্রশংসা করে শ্রী মোদী বলেন, সংবাদমাধ্যমে তখন যে কয়েকজনব্যক্তি জরুরি অবস্থাকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছিলেন তাঁদের পুরোভাগে ছিলেন রামনাথজি। শ্রী মোদী বলেন, কাশি বিশ্বনাথধাম প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে তিনি নিজেকে আর্শিবাদধন্য মনে করছেন। এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত আধিকারিকদের তাঁদের নিষ্ঠার সঙ্গে কর্মসম্পাদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানান। এই মন্দির সংলগ্ন এলাকায় যেসব মানুষের সম্পত্তি রয়েছে, তা প্রকল্পের জন্য অধিগ্রহণে অনুমতি দেওয়ায় তিনি তাঁদের ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাশি বিশ্বনাথ মন্দির শতকের পর শতক বহু উত্থান-পতনের সাক্ষী। দুই শতাব্দীর বেশি সময় আগে কাশি বিশ্বনাথ মন্দিরের সংরক্ষণের স্বার্থে রানী আহিয়াবাই হোলকারের প্রয়াসের কথাও প্রধানমন্ত্রী স্মরণ করেন। শ্রী মোদী বলেন, তার পর থেকে যারাই ক্ষমতায় এসেছে তারা মন্দির সংলগ্ন এলাকার উন্নয়নের জন্য খুব বেশি ভাবনাচিন্তা করেননি। তিনি জানান, সমগ্র মন্দির চত্ত্বরে বর্তমানে সংরক্ষণমূলক কাজকর্ম চলছে এবং এর পরিনাম শীঘ্রই দেখা যাবে। গঙ্গা নদী ও কাশি বিশ্বনাথ মন্দিরের মধ্যে সরাসরি যোগসূত্র গড়ে তোলা হচ্ছে বলেও তিনি জানান। জম্মু ওকাশ্মীরের ওই বাস দুর্ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এইপ্রার্থনা জানাই।” মাননীয় প্রেসিডেন্ট জি জিন পিং, মাননীয় প্রেসিডেন্ট জেকব জুমা, মাননীয় প্রেসিডেন্ট ডিলমা রৌসেফ, সিনাই-তে প্রাণহানির ঘটনায় রাশিয়াকে জানাই আমাদের গভীর সহানুভূতি ও সহমর্মিতা। আঙ্কারা এবং বেইরুটের ঘটনাও আমাদের মনে করিয়ে দেয় সন্ত্রাসের ক্রমবর্ধমান ভয়ঙ্কর চেহারার কথা। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সমগ্র মানবজাতিকে একজোট হতে হবে। সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় সমস্ত বিশ্বকে ঐক্যবদ্ধ ও একজোট হওয়ার সময় এখন উপস্থিত। ব্রিক্‌স সদস্য রাষ্ট্রগুলির কাছে এটি অবশ্যই একটি অগ্রাধিকারের ক্ষেত্র। এমন একটা সময় আমরা অতিক্রম করে এসেছি যখন ব্রিক্‌স গঠনের যৌক্তিকতা ও স্থায়িত্ব সম্পর্কে প্রশ্ন তোলা হত। আমরা আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে ব্রিক্‌স-এর মূল্য ও প্রাসঙ্গিকতা প্রমাণ করেছি। আর সেটা সম্ভব করে তুলেছি এমন একটি সময়ে যখন বিশ্ব এক বিরাট চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন। নতুন উন্নয়ন ব্যাঙ্ক, নগদ জমার ব্যবস্থা, ব্রিক্‌স-এর অর্থনৈতিক সহযোগিতা প্রকৌশল – এ সমস্ত কিছুই আমাদের সঙ্কল্প ও ভবিষ্যৎ সম্পর্কে চিন্তাভাবনার উজ্জ্বল উদাহরণ। একই সঙ্গে, জি-২০-কেও আমরা নতুন রূপে গড়ে তুলতে পারি। ভারত ব্রিক্‌স-কে খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে। এটি সঠিকভাবেই আমাদের নীতি ও আদর্শকে প্রতিফলিত করে। ২০১৫-র ডিসেম্বরে ব্রিক্‌স-কে নেতৃত্বদানের দায়িত্ব চিন গ্রহণ করতে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যেকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা রেল সুরক্ষা নিয়ে ভারত ও জাপানের মধ্যে সহযোগিতা স্মারকে(এম.ও.সি.) স্বাক্ষরের জন্য এক্স-পোস্ট ফ্যাক্টো অনুমোদন দিল| ইতোমধ্যেই এ বছরফেব্রুয়ারি মাসে এই এম.ও.সি. স্বাক্ষরিত হয়ে গেছে| রেলের কামরা ও ইঞ্জিনের সরুক্ষা (যেমন রক্ষণাবেক্ষণ ইত্যাদি)| রেলওয়ের ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক উন্নয়ন ও জ্ঞান নিয়ে আলোচনা ও আদান প্রদানেরক্ষেত্রে এই এম.ও.সি. ভারতীয় রেলওয়ের সামনে একটি মঞ্চ প্রদান করবে| এম.ও.সি.-এরঅধীনে সহযোগিতায় নিম্নলিখিত বিষয় অন্তর্ভুক্ত রয়েছে: নবগঠিত এই পর্ষদে তিন জনের পরিবর্তনে চার জন সদস্য থাকবেন। এর মধ্যে একজন চেয়ারম্যান হবেন। তিন বছরের জন্য অথবা সদস্যদের ৬৫ বছর বয়স হওয়া পর্যন্ত (যেটি আগে হবে) সেই সময়কালের জন্য এই পর্ষদ কাজ করবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে পেশাদারি নিরাপত্তা এবং স্বাস্হ্য ক্ষেত্রে সহযোগিতায় ভারত ও জার্মানীর মধ্যে চুক্তিতে অনুমোদন পেল। ইন্টারন্যাশনাল সোস্যাল সিকিউরিটি অ্যাসোসিয়েশন (আএসএসএ) মাধ্যমে জার্মান সোস্যাল অ্যাক্সিডেন্ট ইনসিউরেন্স (ডিজিইউভি) নির্মাণ এবং উৎপাদন ক্ষেত্রে কিভাবে ওএসএইচ চ্যালেঞ্জেস মোকাবিলা করবে, তা তুলে ধরা হয়েছে এই চুক্তিতে। একইসঙ্গে কর্মক্ষেত্রে কিভাবে স্বাস্হ্য ও সুরক্ষার উন্নতি এবং পেশাদারি আঘাত এবং রোগ থেকে রক্ষা পাবেন শ্রমিকরা এই চুক্তিতে তাও বলা হয়েছে। ভারতের জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণেরসুযোগ এনে দিয়েছে নতুন অসামরিক বিমান পরিবহণ নীতি। গতকালই একশো পঁচিশ কোটি দেশবাসী ‘পরাক্রম পর্ব’ পালন করেছেন। আমরা স্মরণ করেছি ২০১৬ সালে সংঘটিত ‘সার্জিক্যাল স্ট্রাইক’-এর ঘটনাটি, যখন আমাদের সেনারা আমাদের দেশে সন্ত্রাসবাদের আড়ালে প্রক্সি ওয়্যারের নামে যারা ধৃষ্টতা দেখাচ্ছিল, তাদের যথোপযুক্ত জবাব দিয়েছিল। আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর সেনারা দেশের বিভিন্ন প্রান্তে প্রদর্শনীর আয়োজন করেছিল যাতে সিংহভাগ জনসাধারণ, বিশেষত দেশের যুব প্রজন্ম অনুভব করতে পারে আমাদের শক্তি কতখানি, আমরা কতটা সক্ষম আর আমাদের সেনারা নিজেদের জীবন বিপন্ন করে কীভাবে দেশবাসীকে সুরক্ষা প্রদান করে। ‘পরাক্রম পর্ব’র মত দিবস দেশের যুবশক্তির কাছে আমাদের সশস্ত্র বাহিনীর গৌরবপূর্ণ ঐতিহ্যের কথা তুলে ধরে। দেশের একতা এবং অখণ্ডতাকে সুনিশ্চিত করার জন্য আমাদের প্রেরণা দেয়। আমিও বীর যোদ্ধাদের ভূমি রাজস্থানের যোধপুরে এক অনুষ্ঠানে অংশ নিয়েছিলাম। এটা নিশ্চিত যে আমাদের সেনারা তাদের সবাইকে যথোপযুক্ত জবাব দেবে যারা আমাদের দেশের শান্তি ও উন্নতির পরিবেশকে নষ্ট করতে চাইবে। ভারত সদাসর্বদাই শান্তি ব্যবস্থা কায়েম রাখার প্রতি প্রতিজ্ঞাবদ্ধ ও সমর্পিত। বিংশ শতাব্দীর দু–দুটি বিশ্বযুদ্ধে আমাদের এক লক্ষেরও বেশি সেনা শান্তির জন্য নিজেদের প্রাণ উৎসর্গ করেছেন, এই ঘটনা সেই যুদ্ধের, যার সঙ্গে আমাদের কোনও সম্পর্ক ছিল না। আমাদের দৃষ্টি কখনই অপর কোনও দেশের ভূমির ওপর পরেনি। এটা ছিল ‘শান্তি’র প্রতি আমাদের দায়বদ্ধতা। কিছুদিন আগেই ২৩শে সেপ্টেম্বর আমরা ইজরায়েলে Haifa যুদ্ধের শতবার্ষিকী উপলক্ষে মহীশূর, হায়দ্রাবাদ ও যোধপুর ল্যান্সারের বীর সৈনিকদের স্মরণ করেছি, যাঁরা আক্রমণকারীদের থেকে Haifa-কে মুক্ত করেছিলেন। এও ছিল শান্তিরক্ষার উদ্দেশ্যে আমাদের সৈনিকদের প্রদর্শিত এক পরাক্রম। আজও রাষ্ট্রসঙ্ঘের বিভিন্ন শান্তিরক্ষা বাহিনীগুলিতে সর্বাধিক সংখ্যায় সেনা পাঠানো দেশগুলির মধ্যে ভারত অন্যতম। দশকের পর দশক ধরে আমাদের বাহাদুর জওয়ানরা blue helmet পরিধান করে সমগ্র বিশ্বের শান্তিব্যবস্থা কায়েমের উদ্দেশ্যে নিজেদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদের বায়ুশক্তি তুলনাহীন। ৮–ই অক্টোবর আমরা ‘বায়ুসেনা দিবস’ পালন করি। দেশের প্রতি সমর্পিত সমস্ত বায়ুসেনানী ও তাদের পরিবারের সবাইকে জানাই আমার আন্তরিক অভিনন্দন। ১৯৬৫–র যুদ্ধেও বায়ুসেনা শত্রুপক্ষকে উচিত জবাব দিয়েছিল। ১৯৭১–এর বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধের কথা কে না জানে? ১৯৯৯–এ কারগিলকে অনুপ্রবেশকারীদের হাত থেকে মুক্ত করতেও বায়ুসেনা অতি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছিল। টাইগার হিল–এ শত্রুপক্ষের ঘাঁটিতে ক্রমাগত বোমাবর্ষণ করে বায়ুসেনা তাদের নাস্তানাবুদ করেছিল। ত্রাণ এবং উদ্ধারকার্য হোক বা আপৎকালীন ব্যবস্থাপনা, বায়ুসেনার উল্লেখযোগ্য ভূমিকার জন্য সমগ্র দেশ তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। তুফান, ঝঞ্ঝা,বন্যা বা ভয়াবহ দাবানলের মত প্রাকৃতিক বিপর্যয়গুলির মোকাবিলায় ও দেশবাসীর সহায়তায় বায়ুসেনার অবদান দৃষ্টান্তমূলক। দেশেGender Equality অর্থাৎ নারী–পুরুষের সমতা সুনিশ্চিত করতেও বায়ুসেনা দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে ও নিজেদের প্রত্যেক বিভাগের দ্বার দেশের কন্যাদের জন্য উন্মুক্ত করেছে। এখন তো বায়ুসেনা মহিলাদের ‘শর্ট সার্ভিস কমিশন’-এর সঙ্গে সঙ্গে ‘পার্মানেন্ট কমিশন’-এর বিকল্পও বেছে নেওয়ার সুযোগ দিচ্ছে, যার ঘোষণা আমি এই বছর ১৫ আগষ্টের দিনটিতে লালকেল্লার প্রাকার থেকে করেছিলাম। ভারত গর্বের সঙ্গে বলতে পারে, ভারতীয় সশস্ত্র সেনাবাহিনীতে শুধু পুরুষ শক্তিই নেই, নারীশক্তির যোগদানও দিনে দিনে বৃদ্ধি পাচ্ছে। নারী শক্তিশালী তো বটেই এখন সশস্ত্রও হচ্ছে। সারা দেশ চিন্তিত ছিল ওকে কিভাবে বাঁচানো যায়। আপনারা নিশ্চয়ই জানেন অভিলাষ টোমি নৌবাহিনীর এক নির্ভীক, সাহসী ও বীর সৈনিক। অভিলাষ প্রথম ভারতীয় যিনি কোনো আধুনিক প্রযুক্তি ছাড়াই একটি ছোট্ট নৌকো নিয়ে বিশ্ব–ভ্রমণ করছিলেন। ৮০ দিন ধরে ভারত মহাসাগরের দক্ষিণে গোল্ডেন গ্লোব রেস প্রতিযোগিতায় অংশগ্রহণ করে যখন দ্রুতগতিতে এগোচ্ছিলেন তখন এক ভয়ঙ্কর সামুদ্রিক ঝড়ের মধ্যে পড়েন। এত বিপদের মধ্যেও ভারতীয় নৌবাহিনীর এই বীর বেশ ক’দিন ধরে জীবনযুদ্ধ চালিয়ে যান। আমি অভিলাষ টোমির দ্রুত আরোগ্যের জন্যে প্রার্থনা করছি আর আশা করছি যে ওর এই সাহস, এই বীরত্ব, এই দৃঢ়সংকল্প – এই লড়ে জিতে নেওয়ার শক্তি – আমাদের দেশের যুব প্রজন্মকে প্রেরণা ও উৎসাহ যোগাবে। আমার প্রিয় দেশবাসী, ২–রা অক্টোবর দিনটির কী মাহাত্ম্য — তা শিশুরাও জানে। এবছর এই দিনটির আরও বিশেষ এক গুরুত্ব রয়েছে। আমরা আগামী দু–বছর ধরে মহাত্মাগান্ধীর সার্ধশত জন্মজয়ন্তী উদ্‌যাপনের জন্য বিশ্বজুড়ে নানান কর্মসূচি পালন করতে যাচ্ছি। মহাত্মা গান্ধীর ভাবধারা ও চিন্তাচেতনা আজ সারা বিশ্বে পৌঁছে গেছে। আজকের ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে আমি আপনাদের সঙ্গে পূজনীয় বাপুজীর আরও এক মহৎ কাজ নিয়ে আলোচনা করতে চাই — যা সমস্ত দেশবাসীরই জানা দরকার। ১৯৪১ সালে মহাত্মা গান্ধী constructive programme বা ‘গঠনমূলক কার্যক্রম’ হিসেবে কিছু চিন্তাধারা লিপিবদ্ধ করতে শুরু করেন। পরে, ১৯৪৫ সালে যখন স্বাধীনতা সংগ্রাম জোরদার হয়ে উঠল, তখন গান্ধীজী তাঁর এই চিন্তাধারাগুলির সংশোধিত প্রতিলিপি তৈরি করলেন। এটাই মহাত্মা গান্ধীর ব্যক্তিত্বের সর্বাপেক্ষা মূল্যবান বৈশিষ্ট্য হিসেবে প্রত্যেকে অনুভবও করেছেন। তিনি দেশবাসীকে উপলব্ধি করিয়েছিলেন যে তারা দেশের বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং আবশ্যক। এই উপলব্ধিকে তিনি এক সর্বাত্মক জন আন্দোলনের রূপ দিয়েছিলেন যা ছিল স্বাধীনতা সংগ্রামে তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ অবদান। স্বাধীনতা সংগ্রামে মহাত্মা গান্ধীর আহ্বানে সমাজের প্রতিটি ক্ষেত্রের, প্রতিটি গোষ্ঠীর মানুষ নিজেকে সমর্পণ করে দিয়েছিলেন। বাপুজী আমাদের সবাইকে এক প্রেরণাদায়ক মন্ত্র দিয়েছিলেন, যা ‘গান্ধীজীর জাদুমন্ত্র’ বলে আমরা জানি। তখনই তুমি লক্ষ্য করবে তোমার সন্দেহ নিরসন হল এবং অহংকার নিবৃত্ত হল।” আমার প্রিয় দেশবাসী, গান্ধীজীর এক কৌশল আজও একইরকম গুরুত্বপূর্ণ। দেশের ক্রমবর্ধমান মধ্যবিত্তশ্রেণির আর্থিক শক্তি এবং ক্রয় ক্ষমতা আজ উর্দ্ধমুখী। এই প্রেক্ষিতে আমরা যখন কিছু কিনতে যাই, তখনই পূজনীয় বাপুজীর সেই মহান কৌশল বা মন্ত্র স্মরণ করতে পারি। আমি যে পণ্যটি ক্রয় করছি, তাতে আমাদের দেশের কোনও নাগরিকের লাভ হচ্ছে কি? এতে কার মুখে খুশির আলো ঝলমল করবে? কে সেই ভাগ্যবান — যার কাছে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে আমার এই ক্রয় থেকে লাভ পৌঁছবে। দরিদ্রতর মানুষের কাছে যদি সেই লাভ পৌঁছয় — তাহলেই আমার খুশিও বহুগুণে বেড়ে যাবে। গান্ধীজীর এই কৌশলকে মনে রেখে আগামীদিনে আমরা যখনই কিছু কিনব, গান্ধীজীর সার্ধশত জন্মজয়ন্তী যাপন করার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের অবশ্যই খেয়াল রাখতে হবে যে আমাদের প্রত্যেকটি ক্রয়ের ফলে যেন কোনও না কোনও দেশবাসীর ভালো হয় এবং পণ্যটির উৎপাদনে যাঁদের ঘাম ঝরেছে, যাঁরা বিনিয়োগ করেছেন, যাঁরা নিজেদের প্রতিভা কাজে লাগিয়েছেন, তাঁদের প্রত্যেকের কাছেই যেন কিছু না কিছু লাভ পৌঁছয়। আমার প্রিয় দেশবাসী, গান্ধীজি যখন বলেছিলেন জঞ্জাল পরিষ্কার করলে স্বাধীনতা পাওয়া যাবে তখন হয়ত উনি জানতেনও না এটা কিভাবে হবে। তেমন ভাবেই আজ আমাদের মনে হতে পারে আমাদের এই ছোট্ট কাজের মাধ্যমে ও আমার দেশের আর্থিক প্রগতিতে, আর্থিক সশক্তিকরণ এর ক্ষেত্রে ,দরিদ্রকে দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াই করার শক্তি যোগাতে আমরা বড় অবদান রাখতে পারি। আর আমার মতে এটাই আজকের যুগের প্রকৃত দেশভক্তি, এটাই পুজনীয় বাপুর কাজের প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি। দেশ ও দেশবাসীর প্রতি ভালোবাসা ওই ছোটখাটো চেহারার মহামানবের শিরায় শিরায় প্রবাহিত ছিল। দুদিন পর পূজনীয় বাপুর সঙ্গে আমরা শাস্ত্রীজির জন্মজয়ন্তী ও পালন করব। শাস্ত্রীজীর নাম উচ্চারিত হতেই আমাদের অর্থাৎ ভারতবাসীর মনে এক অসীম শ্রদ্ধার জন্ম হয়। ওর সৌম্য ব্যক্তিত্ব প্রত্যেক দেশবাসীর মন সর্বদা গর্বে ভরে দেয়। ‘জয় জওয়ান জয় কিষাণ’ মন্ত্রটি ছিল তাঁর বিরাট ব্যক্তিত্বের পরিচায়ক। আমি সেই স্কুলে গেছি, যার ভিত্তি স্থাপন করেছিলেন পূজনীয় বাবা সাহেব নিজে। 15 তারিখ থেকে দেশজুড়ে প্রতিটি শ্রেণির মানুষ এই শ্রম দানে যুক্ত হন। বিভিন্ন সংস্থা এতে অংশগ্রহণ করেছে। স্কুলের বাচ্চা, কলেজের ছাত্র ছাত্রী, এন সি সি, এন এস এস, যুব সংগঠন, মিডিয়া গ্রুপ, কর্পোরেট জগত সবাই বৃহদাকারে স্বচ্ছতা শ্রম দান করেছেন। আমি এর জন্য সকল স্বচ্ছতাপ্রেমী দেশবাসীকে আন্তরিকভাবে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আপনি যদি এই বিষয়টা জানিয়ে আমাদের ফোন না করতেন তাহলে হয়তো স্বচ্ছতা অভিযানে যুক্ত ব্যক্তিদের মনেও এই সংবেদনশীল বিষয়টি আসত না। আপনার ফোনের জন্য আমি আপনাকে বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানাই। আমার প্রিয় দেশবাসী ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ শুধু দেশেই নয় বরং সারা পৃথিবীতে একটি সাফল্যের কাহিনি হয়ে উঠেছে যার বিষয়ে সকলেই আলোচনা করছেন। এবার ভারত পৃথিবীর সবচেয়ে বড় স্বচ্ছতা সম্মেলন আয়োজন করতে চলেছে– ‘মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক স্বচ্ছতা সম্মেলন’ অর্থাৎ মহাত্মা গান্ধী ইন্টারন্যাশনাল স্যানিটেশন কনভেনশন। সারা পৃথিবীর থেকে স্বচ্ছতা মন্ত্রকের আধিকারিক এবং এই বিষয়ের বিশেষজ্ঞরা এসে স্বচ্ছতা সম্পর্কিত প্রয়োগ ও অভিজ্ঞতা ভাগ করে নেবেন। ‘Mahatma Gandhi International Sanitation Convention’-এর সমাপ্তি ২রা অক্টোবর, ২০১৮–তে বাপুর সার্ধশত জন্ম জয়ন্তীর শুভ সূচনার সঙ্গেই হবে। শোষিত, পীড়িত এবং বঞ্চিত মানুষদের স্বাধীনতা, শান্তি এবং তাদের প্রতি ন্যায় সুনিশ্চিত করার জন্য এটা অনিবার্য। ডক্টর বাবাসাহেব আম্বেদকার রচিত সংবিধানে গরীবদের মূল অধিকারগুলি রক্ষার জন্য বেশ কিছু উপায় রয়েছে। তাঁর ভাবনায় অনুপ্রাণিত হয়ে, ১২ ই অক্টোবর ১৯৯৩ সালে, ‘জাতীয় মানবাধিকার কমিশন’ অর্থাৎ "National Human Rights Commission" (NHRC) গঠন করা হয়েছিল। আমাদের পরমপ্রিয় নেতা, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী প্রয়াত অটল বিহারী বাজপেয়ী স্পষ্ট রূপে বলেছিলেন যে, মানবাধিকার আমাদের কাছে কোনও বিদেশী ধারণা নয় । আমাদের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতীক চিহ্নে, বৈদিক যুগের আদর্শ নীতি, "সর্বে ভবন্তু সুখিনঃ" অলংকৃত রয়েছে। NHRC মানবাধিকার নিয়ে ব্যাপক মাত্রায় সচেতনতা সৃষ্টি করেছে, সঙ্গে এর অপব্যবহার আটকাতেও প্রশংসনীয় ভূমিকা পালন করেছে। পঁচিশ বছরের এই সফরে এই কমিশন দেশবাসীর মধ্যে আশা ও বিশ্বাসের এক পরিবেশ তৈরি করেছে। আমার মনে হয় এটা একটা সুস্থ সমাজ গঠনের জন্য, গণতান্ত্রিক মূল্যবোধের জন্য খুব আশাব্যঞ্জক। এখন জাতীয় স্তরে মানবাধিকার বিষয়ে কাজের পাশাপাশি, 26 টি ‘রাজ্য মানবাধিকার কমিশন’ গঠন করা হয়েছে। এই বছরেও আসুন আমরা নিজেদের গ্রামেগঞ্জে, শহরে,মহানগরে, ‘Run for Unity’-র আয়োজন করতে সচেষ্ট হই। ‘ঐক্যের জন্য দৌড়’ — এটাই তো সর্দার সাহেবকে স্মরণ করার সঠিক উপায়, কারণ তিনি সারাজীবন দেশের ঐক্যের লক্ষ্যে কাজ করেছেন। দক্ষিণ আফ্রিকা সাধারণতন্ত্রের প্রেসিডেন্ট মাননীয় মিঃ জেকব জুমা, মাননীয় প্রেসিডেন্ট, আপনার সাদর স্বাগত সম্ভাষণ এবং উদার আতিথ্যের জন্য ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। এই দেশে যদিও আমার এটি প্রথম সফর, এই রামধনুরআপ্যায়নের দেশে খুবই স্বচ্ছ্বন্দ বোধ করছি আমি এবং আমার প্রতিনিধিদলের সদস্যরা। এজন্য আমরা গভীরভাবে কৃতজ্ঞ মাননীয় প্রেসিডেন্টের কাছে। পৃথিবীর বুকে মহাত্মা গান্ধী ও নেলসন ম্যান্ডেলার মতো যে দুই মানব মহাত্মা পদচারণা করে গেছেন, তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধা প্রদর্শনের এক ব্যক্তিগত সুযোগ এনে দিয়েছে আমার এই সফর। মিলিত মূল্যবোধ এবং দুঃখ-কষ্ট ও সংগ্রাম আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের এক বলিষ্ঠ ভিত গড়ে তুলেছে। গত দশ বছরে আমাদের দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য বৃদ্ধি পেয়েছে ৩০০ শতাংশেরও বেশি। দু’দেশের বাণিজ্যিক স্বার্থ পূরণের লক্ষ্যেদক্ষিণ আফ্রিকায় রয়েছে ভারতীয় শিল্প সংস্থাগুলির এক উজ্জ্বল উপস্থিতি। আফ্রিকায় আমাদের মোট বিনিয়োগের প্রায় এক-চতুর্থাংশ স্থান দখল করে রয়েছে এই দেশটি। আমাদের বিকাশশীল অর্থনীতির দাবি ও চাহিদাই হল মানব মূলধনকে আরও উন্নত করে তোলা। বৃত্তি, পেশা ও প্রযুক্তিগত এবং পেশাদারিত্বমূলক শিক্ষাক্ষেত্রে আমাদের চাহিদা ও ক্ষমতা পরস্পরের পরিপূরক এবং তা থেকে লাভবান হতে পারে দু’দেশেরই জনসাধারণ। দক্ষিণ আফ্রিকার ক্ষুদ্র ও মাঝারি বাণিজ্য ক্ষেত্রের প্রসারে ভারত তারদক্ষতাওঅভিজ্ঞতা বিনিময়ে প্রস্তুত। অর্থনৈতিক সম্পর্কের বাইরে এবং ব্যবসা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগের সীমানা ছাড়িয়ে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রেও আমরা একে অপরের সহযোগী হয়ে উঠতে পারি। শিল্পের পর্যায়ে এবং সুরক্ষা ও কৌশলগত প্রয়োজনে আমরা আমাদের সহযোগিতার ব্যাপক প্রসার ঘটাতে পারি। ভারতে এই ক্ষেত্রটি এখন এক পূর্ণ রূপান্তরের লক্ষ্যে এগিয়ে চলেছে। প্রতিরক্ষা বাণিজ্যের ক্ষেত্রেও তা এনে দিয়েছে অফুরন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনা। যৌথ সহযোগিতায় প্রতিরক্ষা সরঞ্জাম উৎপাদন এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রে ক্ষমতার বিকাশ ঘটাতে প্রস্তুত আমাদের শিল্প সংস্থাগুলি। কিন্তু শুধুমাত্র প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত চাহিদা পূরণেই নয়, আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক প্রয়োজনে সাড়া দিতেও প্রস্তুত আমাদের এই সংস্থাগুলি। বিভিন্ন আন্তর্জাতিক বিষয় এবং বিশ্বে উদ্ভূত বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে কাজ করার প্রয়োজনীয়তাকেও স্বীকার করে নিয়েছি আমি এবং প্রেসিডেন্ট জুমা। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে ভারতের আবেদনকে সমর্থন জানানোর জন্য দক্ষিণ আফ্রিকার প্রেসিডেন্টের কাছে আমি কৃতজ্ঞ। দক্ষিণ আফ্রিকার মতো বন্ধু রাষ্ট্রগুলির সক্রিয় সমর্থনের ওপর আমরা নির্ভর করতে পারি বলেই আমার বিশ্বাস। জলবায়ু পরিবর্তন এবং বিশ্বে তার প্রভাব সম্পর্কে এক সাধারণ উদ্বেগের অংশীদার আমাদের এই দুটি দেশই। এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি শক্তির উৎপাদনে বড় ধরনের প্রচেষ্টার প্রয়োজন রয়েছে বলে সহমত প্রকাশ করেছিআমরা। এই লক্ষ্যেই প্যারিসে সিওপি-২১ শীর্ষ বৈঠকে আন্তর্জাতিক সৌর সমঝোতা গড়ে তোলার প্রচেষ্টায় নেতৃত্বদানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছিল ভারত। সন্ত্রাসের হুমকি হল আমাদের দু’দেশের সাধারণ উদ্বেগের আরেকটি কারণ। আমাদের দু’দেশের জনসাধারণের সুরক্ষা ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে এক বড় ধরনের ঝুঁকি এনেদিয়েছে এই বিষয়টি।সমাজের মূল ভিত্তিটিকেই বিনষ্ট করতে চায় সন্ত্রাসবাদ। সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে তথা সমগ্র বিশ্বে সন্ত্রাসের সক্রিয় মোকাবিলায় আমাদের দুটি দেশেরই সতর্ক থাকা এবং একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতা করার বিষয়ে সহমত হয়েছি প্রেসিডেন্ট ও আমি। ভারত মহাসাগরের জলরাশি হল আমাদের এক সাধারণ নৌ-সীমানা। ভারত মহাসাগরের মাধ্যমে সংযুক্ত প্রতিবেশী দেশগুলির সহযোগিতার একটি মূল মঞ্চ হিসেবে গড়ে উঠেছে ভারত মহাসাগরীয় রিম অ্যাসোসিয়েশন। ২০১৭-১৯ – এই সময়কালে এই সংগঠনে দক্ষিণ আফ্রিকার নেতৃত্বকে আমি স্বাগত জানাই। আইবিএসএ (ভারত, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকা) এবং ব্রিক্‌স-এর মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক কার্যসূচির অগ্রাধিকারগুলিকে রূপ ও আকার দিতে একযোগে কাজ করে চলেছে ভারত ও দক্ষিণ আফ্রিকা। এ বছরের শেষের দিকে আগামী অক্টোবর মাসে, গোয়ায়ব্রিক্‌স শীর্ষ বৈঠকে প্রেসিডেন্ট জুমাকে স্বাগত জানানোর জন্য আমি অপেক্ষা করে রয়েছি। পরিশেষে আমি বলতে চাই যে, আমাদের এই সম্পর্ক রূপান্তরিত হয়েছে প্রতিজ্ঞা, সংকল্প, ন্যায় এবং মানব উৎকর্ষ সন্ধানের এক বিশেষ কাহিনীতে যা এক কথায় শুধুমাত্র ব্যতিক্রমীই নয়, পৃথিবীতে যা একান্তই বিরল। আগামীকাল অর্থাৎ বুধবার নয়াদিল্লির পুসায় আইএআরআই’তে নানাজি দেশমুখ-এরজন্মশতবর্ষ উদযাপনের উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। ‘গ্রাম জীবনে প্রযুক্তি’ বিষয়টিকে অবলম্বন করে আয়োজিত একটি প্রদর্শনীওপরিদর্শন করবেন তিনি। ১০০’রও বেশি দক্ষ কাজকর্মের নিদর্শন এবং অ্যাপ্লিকেশন স্থানপেয়েছে ঐ প্রদর্শনীটিতে। গ্রামীণ উদ্ভাবন ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত পেশাদারব্যক্তিদের সঙ্গেও কথা বলবেন তিনি। নানাজি দেশমুখ এবং লোকনায়ক জয়প্রকাশ নারায়ণের উদ্দেশে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদনকরবেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী নানাজি দেশমুখ-এর ওপর একটি স্মারক ডাকটিকিটও এদিন আনুষ্ঠানিকভাবেপ্রকাশ করবেন। জেলা পর্যায়ে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক কাজকর্মের মধ্যে সমন্বয়সাধন এবংসেগুলির দেখভালের জন্য একটি বিশেষ পোর্টালেরও সূচনা করবেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরনেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার এই বৈঠকটি। এই প্যাকেজটি সংক্ষেপে সিজিটিএমএসইনামে পরিচিত। ইউরোপীয় ইউনিয়নের নিরাপত্তা নীতি এবং বিদেশ সংক্রান্ত বিষয়ের উচ্চস্তরীয়প্রতিনিধি মিসেস ফ্রেডেরিকা মোগারিনি শুক্রবার এখানে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। পারস্পরিক স্বার্থ সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিকউন্নয়নের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে তাঁরা আলোচনা ও মতবিনিময় করেন। শ্রী মোদী এবং মিসেস মোগারিনি সন্ত্রাস মোকাবিলায় ভারত এবং ইউরোপীয়ইউনিয়নের মধ্যে নিরাপত্তা সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করে তোলার প্রশ্নে সহমত জ্ঞাপনকরেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ স্বাগত জানালেন বাহরিনের বিদেশ মন্ত্রী শেখ খালিদ বিন মহম্মদ আল খালিফাকে। বাহরিনে বসবাসকারী ভারতীয় সমাজের চার লক্ষেরও বেশি মানুষকে বাহরিন সরকার যে সহযোগিতা করছেন তার প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। বাহরিনের বিদেশমন্ত্রী বাহরিনের প্রধানমন্ত্রী প্রদত্ত আমন্ত্রণপত্র ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে প্রদান করেন। ভারতের প্রতি বাহরিনের মানুষের সৌহার্দ্র্য ব্যক্ত করেন সে দেশের বিদেশ মন্ত্রী। পাশাপাশি, প্রতিরক্ষা, নিরাপত্তা, জঙ্গি কার্যকলাপ মোকাবিলা, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ প্রভৃতি ক্ষেত্রগুলিতে দু’দেশের মধ্যে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক রক্ষায়ও বাহরিন যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ তাও জানান আলাপচারিতায়। প্রধানমন্ত্রীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে অবৈধ মাদক পাচার ও ঐ জাতীয় অন্যান্য উপাদানের চোরাচালান রোধে এক সমঝোতাপত্র বা মউ স্বাক্ষরে অনুমতি মিলেছে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে অবৈধ মাদক চোরাচালান প্রতিরোধে পারস্পরিক সহযোগিতা গড়ে উঠবে। কৃষকদের স্বার্থে প্রযুক্তির সফল প্রয়োগ ঘটিয়ে কৃষিক্ষেত্রে এক নতুন ‘সংস্কৃতি’ গড়ে তোলা প্রয়োজন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকারের নীতি ও সিদ্ধান্তগুলির উদ্দেশ্যই হল কৃষকদের আয় বাড়ানো। বৈজ্ঞানিক প্রয়াস, প্রযুক্তিগত উদ্ভাবন এবং গবেষণা ও উন্নয়নের মাধ্যমে কৃষিক্ষেত্রকে লাভজনক পেশায় পরিণত করতে স্নাতক স্তরের পড়ুয়ারা সক্রিয় ভূমিকা পালন করবে বলে প্রধানমন্ত্রী আস্থা ব্যক্ত করেন। পাকালদুল প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, একদিকে একটি জলবিদ্যুৎ প্রকল্পের উদ্বোধন, অন্যদিকে আর একটি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপিত হওয়ায় ঐ দিনটি নিঃসন্দেহে অনন্য। দেশে উন্ন্যনের দিক থেকে পিছিয়ে পড়া অংশগুলির সার্বিক অগ্রগতির জন্য ‘বিচ্চিন্ন না রেখে সেগুলিকেও বিকাশের পথে সামিল করার’ লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকার কাজ করছে বলে তিনি উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী আরও বলেন, টেরাকোটে মার্গ মাতা বৈষ্ণোদেবী মন্দিরে যাওয়ার ক্ষেত্রে তীর্থযাত্রীদের একটি বিকল্প রাস্তা প্রদান করবে। সয়েল হেলথ্‌ কার্ড এবং প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা – কৃষি সম্পর্কিত এই দুটি প্রধান কর্মসূচির অগ্রগতি আজ পর্যালোচনা করলেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। কর্মসূচির অগ্রগতি পর্যালোচনা করে প্রধানমন্ত্রীবলেন, মাটির নমুনা এবং বিভিন্ন পরীক্ষাগারে তা পরীক্ষা করে দেখার কাজটিতে যথেষ্টসতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন, যাতে মাটির প্রকৃতি বা তার আসল স্বাস্থ্যের বিষয়টিসহজেই চিহ্নিত করা যায়। এই ব্যবস্থায় মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষা সম্পর্কিত রিপোর্টবা প্রতিবেদনের যথার্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব। শ্রী মোদী বলেন, সয়েল হেলথ্‌ কার্ডের মুদ্রণআঞ্চলিক ভাষা বা উপ-ভাষায় হওয়া প্রয়োজন, যাতে কৃষকরা তা পাঠ করে মাটির প্রকৃতিসম্পর্কে সহজেই অবহিত থাকতে পারেন। এই প্রচেষ্টায় স্টার্ট আপ সংস্থা এবং শিল্পোদ্যোগীদেরযুক্ত করার সম্ভাবনার বিষয়টি খতিয়ে দেখার জন্য তিনি নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্টআধিকারিকদের। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা সম্পর্কেপ্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয় যে ২০১৬’র খরিফ মরশুমে এবং ২০১৬-১৭ অর্থ বছরের রবিমরশুমে ৭,৭০০ কোটি টাকার বিমা সংক্রান্ত দাবিদাওয়া ইতিমধ্যেই পূরণ করা হয়েছে।এরফলে, উপকৃত হয়েছেন ৯০ লক্ষেরও বেশি কৃষিজীবী। ভারত ও সাইপ্রাস ছাড়াও তৃতীয়দেশগুলির সঙ্গে এর ফলে পণ্য পরিবহণের কাজ বিশেষভাবে উৎসাহিত হবে বলে মনে করাহচ্ছে। ঐ অনুষ্ঠানেই প্রধানমন্ত্রী নুমালিগড় রিফাইনারি লিঃ-এর অন্তর্গত ভারতের সর্বাধিক মোম উৎপাদনকারী ইউনিটটি-ও জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। এরপর, তিনি ডিব্রুগড়ের মোরাণে চা শ্রমিকদের এক সমাবেশে ভাষণ দেবেন। শিবসাগরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী শ্রীমন্ত শঙ্করদেব সংঘর ৮৫তম বার্ষিক সম্মেলনে ভাষণ দেবেন। বিকালে প্রধানমন্ত্রী গুয়াহাটিতে দ্বাদশ দক্ষিণ-এশীয় ক্রীড়া প্রতিযোগিতার উদ্বোধন করবেন। এই অঞ্চলের ৮টি প্রতিবেশী দেশ – আফগানিস্তান, বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কা এই ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় অংশ নিচ্ছে। আগামীকাল প্রধানমন্ত্রী বিশাখাপত্তনমে আন্তর্জাতিক নৌ-বহর সমীক্ষায় অংশ নেবেন। তিনি নৌ-বহর সংক্রান্ত একটি প্রদর্শনীতেও যোগ দেবেন। প্রধানমন্ত্রী আগামী রবিবার ভুবনেশ্বরে ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অফ সায়েন্স এডুকেশন অ্যান্ড রিসার্চ প্রতিষ্ঠানটির দ্বারোদ্ঘাটন করবেন। ঐ দিন তাঁর পুরীর শ্রী জগন্নাথ মন্দির দর্শনেও যাওয়ার কথা। পারাদিপে প্রধানমন্ত্রী সর্বাধুনিক প্রযুক্তিতে নির্মিত ইন্ডিয়ান অয়েলের একটি তৈল শোধনাগারের উদ্বোধন করবেন। প্রধানমন্ত্রী ঐ তৈল শোধনাগার ও ইন্ডম্যাক্স ইউনিটটি ঘুরে দেখবেন। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে জ্বালানি ক্ষেত্রে ভারত ও জাপানের মধ্যে দ্বিপাক্ষিকসম্পর্কের বিশেষ প্রসার ঘটবে বলে মনে করা হচ্ছে। ভারতে গ্যাসের যোগানে বৈচিত্র্যনিয়ে আসার ক্ষেত্রেও এই মউটি বিশেষভাবে সাহায্য করবে বলে মন্ত্রিসভার ধারণা ওবিশ্বাস। দেশে বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত প্রায় ৯০ জন আশা প্রতিনিধির একটি দল আজ (বৃহস্পতিবার, ২০ সেপ্টেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে, সম্প্রতি তাঁদের ভাতা বৃদ্ধি ও বিমার সুবিধা প্রদানের কথা ঘোষণা করার জন্য সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী সারা দেশের আশা ও অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তাঁর সাম্প্রতিক মতবিনিময়ের কথা স্মরণ করেন। সেদিন আশা কর্মীদের তাঁদের ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা তাঁর সঙ্গে ভাগ করে নেওয়ার বিষয়টির প্রশংসা করে শ্রী মোদী বলেন, এদের অভিজ্ঞতার কথা নিশ্চিতভাবে বহু মানুষের কাছে অনুপ্রেরণাদায়ক বলে প্রমাণিত হবে। আজ, আশা কর্মীরা আরও শোনালেন, কিভাবে তাঁরা সময় মতো প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে গরিব মা ও শিশুদের জীবন রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছেন। আশা কর্মীদের দক্ষতা ও নিষ্ঠার প্রশংসা করে কালাজ্বরের মতো অসুখ দূরীকরণে বিল ও মেলিন্ডা গেট্‌স-এর মতো ব্যক্তিরাও তাঁদের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেছেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। গ্রামগুলিতে জীবনযাপনের মানোন্নয়নে বিভিন্ন সরকারি সংস্থার সঙ্গে সমন্বয় বজায় রেখে কাজ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী আশা কর্মীদের আরও নিষ্ঠাবান হবার পরামর্শ দেন। দারিদ্র্যের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গরিব মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে সরকারি প্রকল্প ও উদ্যোগগুলির উদ্দেশ্যের কথাও শ্রী মোদী বিশদে ব্যাখ্যা করেন। আশা প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সাক্ষাতের সময়ে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রী শ্রী জে পি নাড্ডাও উপস্থিত ছিলেন। এই অনলাইন ব্যবস্হার সদস্যপদের জন্য রপ্তানিকারক কোম্পানীগুলি দায়িত্বপ্রাপ্ত সংগঠনের মাধ্যমে আবেদন জানাবে। প্রতি বছর উভয় পক্ষ আমদানি-রপ্তানির পরিমান নির্ধারন করবে। ভারত সরকারের অর্থমন্ত্রকের নীতি নির্দেশিকা অনুসারে তুরস্কের শস্য পর্ষদের অনলাইন ব্যবস্হা থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ নারকোটিক্স পোস্তদানা বিক্রয় সংক্রান্ত চুক্তিগুলি নথিভুক্ত করবে। পরে এ সংক্রান্ত বিস্তারিত তথ্য অনলাইনে দেওয়া হবে। ভারতের সেন্ট্রাল ব্যুরো অফ নারকোটিস্কের অনুমোদিত চুক্তিগুলি-ই কেবলমাত্র তুরস্কের শস্য পর্ষদ রূপায়নের অনুমতি দেবে। বিক্রয় সংক্রান্ত চুক্তি এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়ার পর তুরস্কের শস্য পর্ষদ রপ্তানিকারকদের এ সংক্রান্ত একটি আইনগত সার্টিফিকেট প্রদান করবে। এই সমঝোতার ফলে তুরস্ক থেকে নির্দিষ্ট নিয়ম মেনে দ্রুত এবং স্বচ্ছ পদ্ধতিতে ভারতে পোস্তদানা আনা সম্ভব হবে। আইনগত জটিলতায় আমদানিতে বিলম্ব এড়ানোও সম্ভব হবে। এই সমঝোতা রূপায়নের ফলে ভারতের অভ্যন্তরীন বাজার পোস্তদানার সরবরাহ নিশ্চিত হবে এবং ভারতীয় গ্রাহকরা এর ফলে উপকৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মহাত্মা গান্ধী এবং লাল বাহাদুর শাস্তীর জন্মজয়ন্তীতে শ্রদ্ধা অর্পণ করে বলেছেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ১৫ই সেপ্টেম্বর স্বচ্ছতাই সেবা আন্দোলনের সূচনা করবেন। পক্ষকালব্যাপি এই আন্দোলনের সূচনা উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে দেশের ১৮টি স্হানে সমাজের বিভিন্ন শ্রেণীর মানুষের সঙ্গে আলাপচারিতায় মিলিত হবেন। প্রধানমন্ত্রী এই উপলক্ষ্যে যাঁদের সঙ্গে কথা বলবেন, তাঁদের মধ্যে রয়েছে, জওয়ান, ধর্মীয় নেতৃবৃন্দ, দুধ এবং কৃষি সমবায়ের সদস্যবৃন্দ, গণমাধ্যমের সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিবর্গ, স্কুলের ছাত্রছাত্রী, স্হানীয় স্বায়ত্বশাসিত সংস্হার প্রতিনিধি, রেলকর্মী, স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য এবং স্বচ্ছাগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা মহাকাশের শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের জন্য ভারত ও মরক্কোর মধ্যে সহযোগিতা চুক্তিতে অনুমোদন দিয়েছে। মরক্কোর তরফে বিশেষ ব্যক্তিত্বের সফর বাস্তবায়িত না হওয়ায় এই চুক্তিটি বাস্তব রূপ পায়নি। উত্তরপ্রদেশের আজমগড়ে শনিবার (১৪ জুলাই, ২০১৮) পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়ের শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে আয়োজিত এক বিরাট সমাবেশের ভাষণে তিনি এই বিশেষ উপলক্ষটিকে রাজ্যের উন্নয়নের পথে যাত্রার এক নতুন অধ্যায় বলে বর্ণনা করেন। মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের নেতৃত্বের প্রশংসা করে শ্রী মোদী বলেন, রাজ্যে উন্নয়ন-বান্ধব এক পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে তাঁর সরকার। সমাজের সর্বস্তরের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নে সচেষ্ট রয়েছে রাজ্য সরকার। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ৩৪০ কিলোমিটার দীর্ঘ পূর্বাঞ্চল এক্সপ্রেসওয়েটি যে সমস্ত শহর ও মফঃস্বল বরাবর রূপায়িত হবে, সেখানে ব্যাপক পরিবর্তন আসবে। দিল্লি ও গাজিপুরের মধ্যে গড়ে উঠবে দ্রুত যোগাযোগ ব্যবস্থা। এক্সপ্রেসওয়ে বরাবর নতুন নতুন শিল্প ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানও গড়ে ওঠার সম্ভাবনা বেশ উজ্জ্বল। তাছাড়া, সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের ঐতিহাসিক গুরুত্ব তুলে ধরতে এই এক্সপ্রেসওয়েটির মাধ্যমে পর্যটনের বিষয়টিও আরও প্রসার লাভ করবে। শ্রী মোদী বলেন, উন্নয়নের স্বার্থে সংযোগ ও যোগাযোগের প্রসার আজকের দিনে একান্ত জরুরি। গত চার বছরে উত্তরপ্রদেশের জাতীয় মহাসড়ক নেটওয়ার্কের প্রসার ঘটেছে প্রায় দ্বিগুণ। প্রসঙ্গত, জল ও আকাশপথে যোগাযোগ প্রসারের লক্ষ্যে যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে তারও এদিন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দেশের পূর্ব প্রান্তকে উন্নয়নের এক নতুন করিডর রূপে গড়ে তোলার জন্য প্রচেষ্টা চালানো হচ্ছে। ‘সব কা সাথ, সব কা বিকাশ’-এর নীতি ও দৃষ্টিভঙ্গির পুনরুচ্চারণ করে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের সুষম বিকাশের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’ এবং ‘প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনা’ সহ কেন্দ্রীয় সরকারের অন্যান্য কল্যাণ কর্মসূচিগুলির কথাও এদিন উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। কৃষক কল্যাণে খরিফ শস্যের সাম্প্রতিক ন্যূনতম সহায়ক মূল্য বৃদ্ধির কথাও উল্লেখ করেন তিনি। তিন তালাক প্রথা থেকে মুসলিম মহিলাদের মুক্তি ও সুরক্ষার স্বার্থে যে আইনটি চালু হয়েছে তাকে বানচাল করে দিতে কোন কোন মহল তৎপর হয়ে উঠেছে বলে সমালোচনা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই আইনটিকে বাস্তবায়িত করার দৃঢ় সঙ্কল্পের কথা ঘোষণা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এবং উত্তরপ্রদেশ সরকার – উভয়ের কাছেই দেশ এবং দেশবাসীর স্বার্থ সবার ওপরে। এই অঞ্চলের তাঁতশিল্পীদের জন্য কেন্দ্রীয় সরকার যে বিশেষ উদ্যোগ গ্রহণ করেছে সেকথাও প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি। এজন্য আধুনিক যন্ত্রপাতি, অপেক্ষাকৃত কম সুদে ঋণের ব্যবস্থা এবং বারাণসীর বাণিজ্য সহায়তা কেন্দ্রের অবতারণা করেন প্রধানমন্ত্রী। গত মাসে উপ-রাষ্ট্রপতি শ্রী এম হামিদ আনসারির ইন্দোনেশিয়া সফরকালে জাকার্তায় এই মউ-টি স্বাক্ষরিত হয়। উজবেকিস্তানের রাষ্ট্রপতির ভারত সফরকালে আগামী পয়লা অক্টোবর এই মউ স্বাক্ষরিত হবে। উভঊ দেশে ঔষধি এবং জৈব-ঔষধি শিল্পে অগ্রগতির পাশাপাশি এই দুই ক্ষেত্রের পণ্য সামগ্রীর বাণিজ্য এবং উৎপাদনের ব্যাপারে পারস্পরিক সহযোগিতার বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখে দুই দেশের সরকার দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা গড়ে তোলার জন্য এক নিয়মমাফিক ব্যবস্থা স্থাপনের চেষ্টা চালিয়ে আসছে। এই মউ স্বাক্ষরের ফলে উজবেকিস্তানের আদিজান অঞ্চলে উজবেক-ভারত উন্মুক্ত ঔষধি অঞ্চল স্থাপন করা সম্ভব হবে। নয়াদিল্লি, ২ এপ্রিল, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মহাবীর জয়ন্তী উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। রবিবাররাষ্ট্রপতি ভবনে এক গ্রন্থ প্রকাশ অনুষ্ঠানে যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। ‘রাষ্ট্রপতি ভবন : রাজ থেকে স্বরাজ’ বইটিআনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করে তার প্রথম কপিটি তিনি তুলে দেন রাষ্ট্রপতির হাতে। রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কাজের সুযোগ লাভ এবং অনেকবিষয়েই শিক্ষা ও জ্ঞান অর্জনের ঘটনা নিঃসন্দেহে তাঁর জীবনে এক সৌভাগ্য বলে মনেকরেন প্রধানমন্ত্রী। বারাণসীরশাহেনশাহ্‌পুর গ্রামে শনিবার এক শৌচাগার নির্মাণের কাজে শ্রমদান করলেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। গ্রামের অধিবাসীদের সঙ্গেও এক আলাপচারিতায় মিলিত হন তিনি।শাহেনশাহ্‌পুরের গ্রামবাসীরা তাঁদের গ্রামকে উন্মুক্ত স্থানে প্রাকৃতিক কাজকর্মকরার অভ্যাস থেকে মুক্ত করে তুলতে আগ্রহী। সেখানে গবাদিপশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষা এবং চিকিৎসা সংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা সম্পর্কে তাঁকে অবহিতকরা হয়। গবাদি পশুর ওপর অস্ত্রোপচার, আল্ট্রা-সোনোগ্রাফি ইত্যাদিরও ব্যবস্থা রয়েছেবলে তাঁকে জানানো হয়। প্রধানমন্ত্রীতাঁর ভাষণে বলেন, এটি হল এমনই এক নতুন উদ্যোগ ও প্রচেষ্টা যার ফলে বিশেষভাবে উপকৃতহবে রাজ্যের পশুপালন ক্ষেত্রটি। দুধের উৎপাদন ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাওয়ার সুবাদেঅর্থনৈতিক কল্যাণ নিশ্চিত হবে জনসাধারণের। কারণ, স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যে ভারত গঠনের স্বপ্ন দেখতেন, তারসফল বাস্তবায়নে তিনি ও তাঁর সরকার কঠোরভাবে পরিশ্রম চালিয়ে যাচ্ছেন। শ্রী মোদীবলেন, “পরিচ্ছন্নতা রক্ষা করা আমাদের সমবেত দায়িত্ব” – এই মানসিকতা সকলের মধ্যেইগড়ে ওঠা প্রয়োজন। স্বচ্ছতা, অর্থাৎ পরিচ্ছন্নতা একদিকে যেমন জনসাধারণেরসার্বিকভাবে ভালো থাকা ও সুস্থ থাকার বিষয়টিকে নিশ্চিত করে, অন্যদিকে তেমনই দরিদ্রজনসাধারণের স্বাস্থ্য সুরক্ষার কাজেও তা একান্ত জরুরি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয়রা প্রকৃতির রক্ষক ও সেবক ছিলেন। তিনি বলেন, আমাদের এই তথ্যটি যথাযথভাবে প্রচার করতে হবে যাতে সারা বিশ্ব বুঝতে পারে যে প্রকৃতি-পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রে এই দেশকে প্রশ্ন করা যায় না। তিনি জানান, ভারতীয়রা সবসময় প্রকৃতিকে রক্ষা করছে এবং আজও সারা বিশ্বের মধ্যে সর্বনিম্ন কার্বন নির্গমনকারী দেশগুলির মধ্যে ভারত রয়েছে। শ্রী মোদী বলেন, আগামীদিনে পরিবেশ রক্ষার জন্য কেবল সীমাবদ্ধতা থাকলেই হবে না, জীবনধারায় পরিবর্তন আনতে হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্জ্য পদার্থের প্রক্রিয়াকরণ ও পুনর্ব্যবহারের সংস্কৃতি এই দেশের কাছে নতুন কিছু নয়। অন্যদের নির্দিষ্ট মাপকাঠির বাধ্যতামূলকভাবে মেনে চলার চেয়ে ভারতকে সারা বিশ্বে আবহ পরিবর্তনের বিরুদ্ধে সংগ্রামে প্রধান ভূমিকা পালন করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, উন্নয়ন ও প্রকৃতি-পরিবেশ একসঙ্গে হতে পারে, কিন্তু এই বিষয়ে কয়েকটি গুরুতর ভ্রান্তির প্রচার করা হচ্ছে। জমি অধিগ্রহণ বিলটির উদাহরন টেনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিলটিতে শর্ত রয়েছে যে উপজাতিদের বনাঞ্চলের জমি স্পর্শ করা যাবে না। বিলটি সম্পর্কে বহু মিথ্যা রটানো হচ্ছে। যাঁরা মিথ্যা রটনা করছেন তাঁদের এমন কাজ না করার আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজকে ভুল পথে চালিত করার এই প্রচেষ্টা দেশের ক্ষতিসাধন করছে। পরমাণু জ্বালানি আমদানির বিষয়ে বিশ্বের বিভিন্ন দেশকে ভারতের ওপর কঠোর নিয়ন্ত্রণ শিথিল করার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী যাতে পরিশ্রুত পরমাণু শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারত অনেকটাই এগিয়ে যায়। শ্রী মোদী জানান যে, সৌরশক্তি, বায়ু ও জৈবশক্তির মতো পরিশ্রুত শক্তি উৎপাদনের বিষয়টিকে সরকার খুবই গুরুত্বের সঙ্গে দেখছে। প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের স্থানে একটি প্রদর্শনীও পরিদর্শন করেন। তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন ক্ষেত্রে এ বছর ১৫ জানুয়ারি তারিখে স্বাক্ষরিত ভারত-শ্রীলঙ্কা সহযোগিতা প্রসার চুক্তির প্রসঙ্গটি আজ বিস্তারিতভাবে আলোচিত হয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে। কেন্দ্রীয় আইন ও বিচার তথা বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী শ্রী রবিশঙ্কর প্রসাদের শ্রীলঙ্কা সফরকালে ঐ চুক্তিটি সম্পাদিত হয়। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৫ সালে তাঁর শ্রীলঙ্কা সফরকালে বিশেষভাবে জোর দিয়েছিলেন ভারতের ‘প্রতিবেশীই প্রথম’ – এই নীতির ওপর। তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে কলম্বোয় অবস্থিত ভারতীয় মিশন এবং বিদেশ মন্ত্রক দু’দেশের মধ্যে সক্রিয় সহযোগিতা প্রসারের একটি উপযুক্ত কাঠামো গড়ে তোলার ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দেয়। উল্লেখ্য, এই কাঠামোগত চুক্তিটি দু’দেশেরমধ্যে স্বাক্ষরিত হয় গত বছর ৩ সেপ্টেম্বর তারিখে। মহাকাশ বিজ্ঞান,ভূ-পৃষ্ঠ সম্পর্কে দূরসংবেদী ব্যবস্থা সহ বিভিন্ন প্রযুক্তির উদ্ভাবন ও প্রয়োগ,উপগ্রহ মারফৎ যোগাযোগ এবং উপগ্রহ-ভিত্তিক অনুসন্ধান, মহাকাশ বিজ্ঞান ও বিভিন্নগ্রহ সম্পর্কে তথ্য আহরণ ও অনুসন্ধান, মহাকাশ যান, মহাকাশ ব্যবস্থা এবং ভূ-পৃষ্ঠেরবৈজ্ঞানিক পদ্ধতি সম্পর্কে জ্ঞান ও তার প্রয়োগ এবং ব্যবহারিক ক্ষেত্রে মহাকাশপ্রযুক্তির ব্যবহার সম্পর্কে দু’দেশের মধ্যে উৎসাহ, আগ্রহ ও সহযোগিতার বাতাবরণ গড়েতোলার লক্ষ্যে এই কাঠামোগত চুক্তিটিকে সম্পাদন করা হয়েছে। এর আওতায় সমগ্রমানবজাতির কল্যাণে মহাকাশ প্রযুক্তির প্রয়োগ এবং যৌথ উদ্যোগে তার ব্যবস্থাপনারলক্ষ্যে কাজ করে যাওয়ার ক্ষেত্রে সহযোগিতাবদ্ধ হবে ভারত ও ভিয়েতনাম – এই দুটি দেশ। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সভাপতি জিম ইয়ং কিম প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। শ্রী কিম ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’ র‍্যাঙ্কিং-এর ভারতের উল্লেখযোগ্য উত্থানের জন্য অভিনন্দন জানান। তিনি বলেন, এটি বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য যে ১২৫ কোটি মানুষের একটি দেশ, মাত্র র চার বছরের স্বল্প সময়ে ৬৫ ধাপ ওপরে উঠে এসেছে। শ্রী কিম বলেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর মজবুত নেতৃত্বের দরুণই এটি সম্ভব হয়েছে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সভাপতি এই উত্থানকে ঐতিহাসিক ও অতুলনীয় সাফল্য বলে বর্ণনা করেন। শ্রী কিম ‘ইজ অফ ডুয়িং বিজনেস’ বা বাণিজ্যে সরলীকরণ ব্যবস্থায় ভারতকে বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহায়তা দেওয়ার আশ্বাস দেন। বাণিজ্যে সরলীকরণ ব্যবস্থায় উন্নতিতে ভারতের উদ্যোগকে সহায়তাদানের জন্য প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব ব্যাঙ্কের সভাপতিকে ধন্যবাদ জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার (১১ সেপ্টেম্বর) সকাল ১০টা ৩০ মিনিটে ‘পুষ্টিমাস’ অভিযানের অঙ্গ হিসাবে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লক্ষ লক্ষ আশা, এএনএম এবং অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পাশাপাশি স্বাস্থ্য পরিষেবার সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন। সারা দেশ জুড়ে সেপ্টেম্বর মাসটি ‘পুষ্টিমাস’ হিসাবে উদযাপন করা হচ্ছে। পুষ্টিগত গুরুত্বের বার্তা দেশের প্রতিটি পরিবারে পৌঁছে দেওয়াই এর উদ্দেশ্য। কেন্দ্রীয় সরকার গত বছরের নভেম্বর মাসে যে জাতীয় পুষ্টি মিশন বা পুষ্টি অভিযান গ্রহণ করেছিল, তার উদ্দেশ্যগুলিকে বাস্তবায়িত করতেই এই প্রয়াস। এই অভিযানের উদ্দেশ্য অপুষ্টি, রক্তাল্পতা, কম ওজনবিশিষ্ট শিশুর জন্ম হার এবং অপুষ্টির কারণে কুঁজো হওয়ার প্রবণতা দূর করা। পোষণ অভিযানের আওতায় সরকার শিশু, মহিলা ও বয়ঃসন্ধিকালীন বালিকাদের মধ্যে অপুষ্টি ও রক্তাল্পতা দূর করা এবং প্রতি বছর ২ শতাংশ হারে কম ওজনবিশিষ্ট শিশুর জন্ম হার কমানোর লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে। অপুষ্টি দূরীকরণের লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীর এই মতবিনিময়, সংশ্লিষ্ট সব পক্ষকে এই মিশনের সঙ্গে যুক্ত করবে। দেশের ইতিহাসে, বিশেষ করে, স্বাধীনতা আন্দোলনে গুজরাট গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। ভারত ও মালদ্বীপের মধ্যে ফৌজদারি বিষয়ে ‘পারস্পরিক আইনি সহায়তা চুক্তি’ করতে কেন্দ্রীয় সরকার সম্মতি দিয়েছে | প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরোহিত্যে আজ মন্ত্রিসভার বৈঠকে এব্যাপারে অনুমোদন দেওয়া হয়েছে | বৈদ্যুতিন ও তথ্যপ্রযুক্তি ক্ষেত্রে গত অক্টোবর মাসে ভারত ও জর্ডনের মধ্যে যে মউ স্বাক্ষরিত হয়েছিল সে সম্পর্কে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিস্তারিতভাবে আলোচনা হয়। ইউনিয়ন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষায় সফল ২০ জন প্রার্থী আমেদাবাদের সর্দার প্যাটেল ইন্সটিটিউট অফ পাবলিক অ্যাডমিনিস্ট্রেশন – এ প্রশিক্ষণ শেষে আজ দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ জাতির উদ্দেশে ভাষণ দেওয়ার অব্যবহিত পরেই ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সফলভাবে রূপায়িত মিশন শক্তি কর্মসূচিতে যুক্ত বিজ্ঞানীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। কৃত্রিম উপগ্রহরোধী ক্ষেপনাস্ত্রের দ্বারা উপগ্রহকে নিশানার মাধ্যমে সফলভাবে মিশন শক্তি বাস্তবায়নের ফলে বিশ্বে চতুর্থ দেশ হিসেবে ভারত স্বীকৃতি পেল। প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞানীদের অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, গোটা দেশ তাঁদের জন্য গর্বিত। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে আমাদের বিজ্ঞানীরা গোটা বিশ্বের কাছে বার্তা দিলেন তাঁরাও ক্ষমতাশালী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত বসুধৈব কুটুম্বকম দর্শনের বিশ্বাসী- সারা বিশ্ব একই পরিবার। শান্তির লক্ষ্যে যাঁরা কাজ করে চলেছেন, তাঁদের আরও ক্ষমতাশালী হওয়ার ওপর তিনি জোর দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বশান্তি এবং আঞ্চলিক শান্তির জন্য ভারতকে সর্বদা শক্তিশালী থাকতে হবে। বিজ্ঞানীরা এই লক্ষ্যে নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করে চলেছেন। তিনি বিজ্ঞানীদের কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার তরফ থেকেও অভিনন্দিত করেন। বিভিন্ন সংবাদ চ্যানেল, নরেন্দ্র মোদী মোবাইল অ্যাপ এবং MyGov মঞ্চ থেকে ছাত্রছাত্রীদের উঠে আসা বহুপ্রশ্নেরও উত্তর দেন তিনি। সময়ে সময়ে বিভিন্নদৃষ্টান্ত তুলে ধরে এবং পরিবেশ ও পরিস্থিতিকে অনেকটাই হালকা করে দিয়েপ্রধানমন্ত্রী তাঁদের সঙ্গে এই আলাপচারিতা চালিয়ে যান। যোগচর্চা ওযোগাভ্যাসও যে মনোযোগ বাড়িয়ে তুলতে সাহায্য করে, একথাও ছাত্রছাত্রীদের জানানপ্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন যে প্রত্যেক শিশুরমধ্যেই কোন না কোন বিষয়ে বিশেষ বুদ্ধি বা মেধার পরিচয় পাওয়া যায়। যে কোনছাত্রছাত্রীর জীবনে মেধা ও আবেগ – দু’য়েরই বিশেষ ভূমিকা রয়েছে বলে মনে করেন তিনি। যে কোনকাজের জন্য সময় ও সুযোগ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন যে একটিমাত্র সময়সূচি সারা বছরধরে অনুসরণ করে গেলে চলবে না, বরং প্রয়োজন অনুযায়ী সময়সূচির ক্ষেত্রে কিছুটাহেরফের ঘটতেই পারে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিমানবাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবসে বিমানবাহিনীর কর্মী ও তাদের পরিবারকে অভিবাদন জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “বিমানবাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবসে কৃতজ্ঞ জাতি বায়ুসেনা কর্মীদের সাহসিকতা ও তাদের পরিবারগুলিকে অভিবাদন জানায়। এরা আমাদের আকাশসীমাকে সুরক্ষিত রেখেছেন এবং বিপর্যয়ের সময় মানবজাতির সেবায় অগ্রভাগে থেকেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ২৩শে সেপ্টেম্বর, ২০১৮-তে ঝাড়খণ্ডের রাঁচিতে প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার উদ্বোধন করবেন। এই প্রকল্পের আওতায় প্রতি বছর ১০ কোটিরও বেশি পরিবারকে ৫ লক্ষ টাকা মূল্যের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণের সুযোগ দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনা বিষয়ক এক প্রদর্শনীও ঘুরে দেখবেন। সুবিধাভোগী চিহ্নিতকরণ ও ই-কার্ড তৈরির মতো কর্মসূচি ও তিনি প্রত্যক্ষ করবেন। একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী চাইবাসা ও কোডারমায় মেডিকেল কলেজের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। তিনি দশটি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেরও উদ্বোধন করবেন। সিকিমের গ্যাংটকে রওনা দেওয়ার পূর্বে তিনি সাধারণের উদ্দেশ্যে ভাষণ দেবেন। এই বিমানবন্দর হিমালয়ের কোলের এই রাজ্যটির যোগাযোগ ব্যবস্থাকে জোরদার করবে এবং সেখানকার পর্যটনেরও বিকাশ ঘটাবে। প্রধানমন্ত্রী পাকিয়ং বিমানবন্দরে পৌঁছনোর পরে বিমানবন্দর ও টার্মিনাল বিল্ডিং-এর বিষয়ে তাঁকে জানানো হবে। তিনি পাকিয়ং বিমানবন্দরের উদ্বোধনী ফলক উন্মোচন করবেন। বন্যায় যাঁরাক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন তাঁদের ব্যথা ও বেদনার শরিক আমি নিজেও। এইপরিস্থিতিতে সমগ্র জাতি রয়েছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জনসাধারণের সঙ্গেই। পরিস্থিতিস্বাভাবিক করতে কেন্দ্রের পক্ষ থেকে সম্ভাব্য সকল রকম সহায়তা করা হবে। বন্যাপরিস্থিতি সম্পর্কে আমি অরুণাচল প্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী পেমা খাণ্ডু এবং দিল্লি ওরাজ্যস্তরের অন্যান্য আধিকারিকদের সঙ্গেও কথা বলেছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার ওড়িশার বিভিন্ন প্রান্তের খরা ও জলসঙ্কট পরিস্হিতি নিয়েএক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে পৌরহিত্য করেন। ওড়িশার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নবীন পট্টনায়কও বৈঠকে অংশ নেন। কেন্দ্রীয় সরকার ও ওড়িশা সরকারের উচ্চ পদস্হ আধিকারিকরাও বৈঠকে উপস্হিত ছিলেন। জাতীয় বিপর্যয় ত্রাণ তহবিল (এনডিআরএফ) থেকে ওড়িশাকে ৬০০.৫২ কোটি টাকা দেওয়া হয়ছে। এটা ২০১৫-১৬-ই রাজ্যের বিপর্যয় ত্রাণ তহবিলে কেন্দ্রীয় অংশ বাবদ দেওয়া ৫৬০.২৫ কোটি টাকার অতিরিক্ত। এছাড়া চলতি অর্থ বছরে রাজ্য বিপর্যয় ত্রাণ তহবিলের প্রথম কিস্তি বাবদ ২৯৪.৩৭৫ কোটি টাকাও ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। জল সংরক্ষণের প্রয়াস হিসেবে ওড়িশা এরই মধ্যে ২৫ হাজার খামারপুকুর, ৭ হাজার চেকবাঁধ, ৪ হাজার পারকোলেশন ট্যাঙ্ক, ৪শো জল ধরে রাখার কাঠামো এবং ৩শো ৫০টি জনগোষ্ঠীগত ব্যবহারের জন্য পুষ্করিনী ইত্যাদী নির্মাণ করেছে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যে ওড়িশায় ৩০ টি জেলার সবকটিতেই প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিন্চাই যোজনার আওতায় জেলা সেচ পরিকল্পনা সম্পন্ন করা হয়েছে। এই প্রকল্প দ্রুত রূপায়ণের জন্য রাজ্যের অঙ্গীকারের ওপর তিনি জোর দেন। অন্যান্য কৃষি প্রকল্প নলবাহিত জল সরবরাহ, গ্রামাঞ্চলে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্হার সম্প্রসারণ প্রভৃতি বিষয়েও বৈঠকে আলোচনা হয়। ইসরোর এইউল্লেখযোগ্য সাফল্য দেশের মহাকাশ বিজ্ঞানী তথা সমগ্র জাতির পক্ষেই এক বিশেষ গর্বেরঘটনা বলে আমি মনে করি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভা বুধবার “শান্তি ও স্থিতিশীলতার জন্য কর্মসংস্থান ও উপযুক্ত কাজ (নং.-২০৫)” নিয়েঅন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আই.এল.ও.) র প্রস্তাবে কোনো বাধ্যবাধকতা থাকেনা|এটা শুধুমাত্র জাতীয় নীতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে একটি পথ নির্দেশকারী নীতি হিসেবেকাজ করে| তিনি আইটিবিপি এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে কথা বলেন এবং তাঁদেরহাতে মিষ্টি তুলে দেন। জওয়ানদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ২০০১ সাল থেকেই প্রত্যেক দীপাবলি’তে তিনি সেনাবাহিনীরকর্মীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসছেন। # সন্দেশ 2 সোলজার্সক্যাম্পেন, এই অভিযানের অঙ্গ হিসাবে সেনাদের প্রতি বার্তা পাঠানোরজন্য দেশবাসীর প্রতি তাঁর আহ্বানে দেশ জুড়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিপুল সাড়াপাওয়া গেছে বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাক্তন সেনাকর্মীদের এক র‍্যাঙ্ক এক পেনশন দেওয়ারজন্য তিনি প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন এবং তিনি যে সেটা পূরণ করতে পেরেছেন, সেজন্য তিনিআনন্দিত। সেনা প্রধান জেনারেল দলবীর সিং-ও এই উপলক্ষে সেখানে উপস্থিত ছিলেন। সামদো থেকে ফেরার পথে প্রধানমন্ত্রী কাছের একটি গ্রাম – চ্যাঙ্গো’তেকিছুক্ষণের জন্য থেমেছিলেন। উত্তরাখণ্ডেরপ্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে রাজ্যবাসীকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী। আমার প্রিয় দেশবাসী! আমরা ২০১৯-এ প্রবেশ করতে চলেছি। স্বাভাবিকভাবেই এই সন্ধিক্ষণে বিগত বছরের কথা এবং আসন্ন নববর্ষের সঙ্কল্পের কথা উভয়ই আলোচিত হচ্ছে। আমরা এমন কি কি উদ্যোগ নিতে পারি, যাতে নিজের জীবনে পরিবর্তন আনতে পারি ও তার সাথে দেশ ও সমাজকে এগিয়ে নিয়ে যেতে পারি। আপনাদের সবাইকে ২০১৯-এর অনেক অনেক শুভেচ্ছা! আপনারা সবাই নিশ্চয়ই ভেবেছেন, ২০১৮-কে কিভাবে মনে রাখা যায়। ২০১৮-য় বিশ্বের সবচেয়ে বৃহৎ স্বাস্থ্যবীমা পরিকল্পনা ‘আয়ুষ্মান ভারত’-এর সূচনা হয়। দেশের প্রতিটি গ্রামে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। বিশ্বের বিশিষ্ট সংস্থাসমূহ স্বীকার করে নিয়েছে যে ভারত রেকর্ড গতিতে দেশকে দারিদ্র্যমুক্ত করার পথে এগিয়ে চলেছে। দেশবাসীর অদম্য সংকল্পের জেরে ‘স্বচ্ছতা অভিযান’ ৯৫ শতাংশ লক্ষ্য পূরণের পথে এগিয়ে চলেছে। স্বাধীনতার পর লালকেল্লা থেকে আজাদ হিন্দ সরকারের ৭৫-তম বর্ষপূর্তিতে প্রথমবার রাষ্ট্রীয় পতাকা উত্তোলন করা হয়। রাষ্ট্র সঙ্ঘের সর্বোচ্চ পরিবেশ পুরস্কার ‘Champions of the Earth’-এ ভারতকে ভূষিত করা হয়েছে। সৌর শক্তি ও জলবায়ু পরিবর্তন রোধের ক্ষেত্রে ভারতের প্রয়াসকে সমগ্র বিশ্ব সাধুবাদ জানিয়েছে। ভারতে ‘আন্তর্জাতিক সৌর জোট’-এর প্রথম মহাসভা ‘International Solar Alliance’-এর আয়োজন করা হয়। দেশের কন্যারা ‘নাবিকা’ সাগর পরিক্রমার মাধ্যমে পুরো বিশ্ব ভ্রমণ করে দেশকে গৌরবাণ্বিত করেছেন। বারাণসীতে ভারতের প্রথম জলপথের সূচনা হয়েছে। এতে জলপথ পরিবহণের ক্ষেত্রে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এসেছে। অনূর্ধ্ব ১৯ ক্রিকেট বিশ্বকাপ এবং ব্লাইণ্ড ক্রিকেটের বিশ্বকাপে ভারত জয়ী হয়েছে। এবারের এশিয়ান গেমস-এও ভারত অনেক পদক জিতেছে। প্যারা-এশিয়ান গেমসেও ভারতের ফলাফল খুব ভালো হয়েছে। তবে যদি আমি প্রতিটি ভারতবাসীর সাফল্য এবং আমাদের সার্বিক প্রচেষ্টার কথা বলতে থাকি, তবে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান’টি এত লম্বা হয়ে যাবে যে ২০১৯ বোধহয় শুরুই হয়ে যাবে। এই সব কিছুই ১৩০ কোটি দেশবাসীর অদম্য প্রচেষ্টায় সম্ভব হয়েছে। আমার বিশ্বাস ২০১৯-এও ভারতের উন্নতি ও প্রগতির যাত্রার ধারাবাহিকতা বজায় থাকবে এবং আমাদের দেশ নতুন উচ্চতা লাভ করবে। ১৯-শে ডিসেম্বর চেন্নাইয়ে ডক্টর জয়া চন্দ্রনের জীবনাবসান হয়েছে। ডক্টর জয়া চন্দ্রন দরিদ্র মানুষকে খুব সস্তায় চিকিৎসা পরিসেবা দেওয়ার জন্য প্রসিদ্ধ ছিলেন। তিনি অসুস্থ মানুষের চিকিৎসা করার জন্য সর্বদা তৎপর থাকতেন। ওঁর কাছে আগত অসুস্থ বয়ঃজ্যেষ্ঠ মানুষদের আসা-যাওয়ার ভাড়াও মিটিয়ে দিতেন। আমি ‘দ্য বেটার ইণ্ডিয়া ডট কম’ ওয়েবসাইটে তাঁর অনেক প্রেরণামূলক সামাজিক কাজ সম্পর্কে পড়েছি। একই ভাবে ২৫-শে ডিসেম্বর কর্ণাটকের সুলাগিট্টি নরসাম্মা-র মৃত্যুসংবাদ পেয়েছি। নরসাম্মা গর্ভবতী মা-বোনেদের প্রসবে সাহায্যকারী ধাইমা ছিলেন। তিনি কর্ণাটকে, বিশেষত প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে হাজারও মা-বোনেদের সেবা করেছেন। এই বছরের শুরুতে তাঁকে ‘পদ্মশ্রী’ সম্মানে ভূষিত করা হয়েছিল। ডক্টর জয়া চন্দ্রন এবং সুলাগিট্টি নরসাম্মার মত বহু দৃষ্টান্তমূলক ব্যক্তিত্ব আছেন, যাঁরা সমাজের ভালোর জন্য নিজেদের জীবন নিয়োজিত করেছেন। যখন স্বাস্থ্য পরিসেবা নিয়ে আলোচনা করছি, তখন আমি উত্তর প্রদেশের বিজনোরে ডাক্তারদের সামাজিক প্রচেষ্টাগুলির উল্লেখ করতে চাই। কিছুদিন আগে আমার পার্টির কয়েকজন কর্মকর্তা আমাকে জানায় যে শহরের কিছু তরুণ চিকিৎসক শিবির করে বিনামূল্যে গরীবদের চিকিৎসা করছেন। এখন প্রতি মাসে শত শত গরীব মানুষ এই শিবির থেকে উপকৃত হচ্ছেন। নিঃস্বার্থ ভাবে সেবায় নিযুক্ত এই চিকিৎসক-বন্ধুদের উৎসাহ সত্যি প্রশংসনীয়। আজ আমি গর্বের সঙ্গে বলতে পারি, আমাদের সম্মিলিত প্রচেষ্টার ফলেই ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ এক সফল অভিযানে পরিণত হয়েছে। আমাকে কিছু মানুষ জানিয়েছেন যে কয়েকদিন আগে মধ্যপ্রদেশের জব্বলপুরে একসঙ্গে তিন লক্ষেরও বেশি মানুষ স্বচ্ছতা অভিযানের সঙ্গে যুক্ত হন। স্বচ্ছতার এই মহাযজ্ঞে নগরনিগম, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন, স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রী, জব্বলপুরের আম জনতা — সবাই মিলে উৎসাহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেন। যখনই সময়-সুযোগ হয়, তখনই আমি ‘দ্য বেটার ইণ্ডিয়া ডট কম’ ওয়েবসাইটে গিয়ে এই ধরনের উদ্বুদ্ধকারী বিষয় সম্বন্ধে জানার চেষ্টা করি। আমি খুশি যে আজকাল এই ধরনের বেশ কয়েকটি ওয়েবসাইট আছে, যেগুলি প্রেরণাদায়ক মানুষদের জীবন কাহিনির সঙ্গে আমাদের পরিচয় করায়। যেমন ‘দ্য পসিটিভ ইণ্ডিয়া ডট কম’ সমাজে পজিটিভিটি ও সংবেদনশীলতার আবহ তৈরি করার চেষ্টা করছে। সেই রকমই ‘ইওর স্টোরি ডট কম’ তরুণ উদ্ভাবক ও উদ্যোগী মানুষদের সাফল্যের কাহিনি খুব সুন্দরভাবে তুলে ধরে। ‘সংস্কৃতভারতী ডট ইন’-এর মাধ্যমে আপনি ঘরে বসে সহজ সরলভাবে সংস্কৃত ভাষা শিখতে পারেন। আমি সকল দেশবাসীর পক্ষ থেকে তাঁর উজ্জ্বল ভবিষ্যত কামনা করি। হনায়ার জন্য রইল অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও আশীর্বাদ। এই রকমই আরেক কন্যা, ষোড়শী রজনীকে নিয়ে মিডিয়াতে অনেক আলোচনা হচ্ছে। আপনারাও নিশ্চয়ই পড়েছেন। রজনী মেয়েদের জুনিয়র বক্সিং চ্যাম্পিয়নশিপ-এ স্বর্ণ পদক জিতেছে। পদক জেতার ঠিক পরেই রজনী কাছের একটি স্টলে গিয়ে এক গ্লাস দুধ খায়। তারপর পদকটি একটি কাপড়ে জড়িয়ে নিজের ব্যাগে রেখে দেয়। রজনী জানিয়েছে, তাকে এই জায়গায় পৌঁছতে তার বাবাকে অনেক ত্যাগ ও কষ্ট স্বীকার করতে হয়েছে। জসমের সিং প্রত্যেক দিন ভোরে রজনী ও তার ভাই-বোনদের ওঠার আগেই কাজে বেরিয়ে যান। রজনী যখন বাবার কাছে বক্সিং শেখার ইচ্ছা জানায়, তার উৎসাহ বাড়ানোর, তার স্বপ্ন সফল করার জন্য তিনি সর্বতোভাবে চেষ্টা করেছেন। রজনী বক্সিং প্র্যাকটিস আরম্ভ করে পুরনো গ্লাভস দিয়েই, কারণ তখন তার পরিবারের আর্থিক অবস্থা ভালো ছিল না। সমস্ত প্রতিকূলতা সত্ত্বেও রজনী সাহস হারায়নি এবং বক্সিং শেখা চালিয়ে যায়। সে সার্বিয়াতেও একটি পদক জয় করে। এই মাসেই পুনের কুড়ি বছর বয়সী বেদাঙ্গী কুলকার্ণি সাইকেলে পৃথিবী পরিক্রমা করে সবথেকে দ্রুতগতি সম্পন্ন এশিয়ান হওয়ার গৌরব অর্জন করেছেন। ও ১৫৯ দিন ধরে প্রতি দিন প্রায় ৩০০ কিলোমিটার সাইকেল চালিয়েছিল। আপনারা কল্পনা করে দেখুন, প্রত্যেকদিন ৩০০ কিলোমিটার সাইক্লিং! সাইকেল চালানোর প্রতি ওর এই অদম্য উৎসাহ সত্যিই প্রশংসনীয়। এই ধরনের উপলব্ধি, এই ধরনের প্রাপ্তির কথা কি আমাদের অনুপ্রাণিত করে না? বিশেষত আমার তরুণ বন্ধুরা যখন এই ধরনের ঘটনার কথা শোনেন, তখন সমস্ত প্রতিকূলতার মধ্যেও তাঁরা কিছু করে দেখাবার প্রেরণা লাভ করেন। যদি সংকল্প অটল হয়, সাহস হয় দুর্জয়, তখন বাধা নিজে নতমস্তক হয়। প্রতিকূলতা কখনও বাধা হয়ে দাঁড়ায় না। কোথাও খেলাধূলার আয়োজন হবে, আবার কোথাও পালিত হবে একে অপরকে তিল-গুড় খাইয়ে মিষ্টিমুখ করানোর উৎসব। লোকজনেরা একে অপরকে বলবে — ‘তিল গুড় ঘ্যা আণি গোড় গোড় বোলা’, অর্থাৎ — ‘তিল-গুড় খাও আর মিষ্টি করে কথা বলো’। এই সময়েই সূর্যের উত্তরায়ণ হয় এবং সূর্য মকর রাশিতে প্রবেশ করে। এরপর থেকেই দিন আস্তে আস্তে বড় হতে শুরু করে আর শীতের ফসল কাটার দিন শুরু হয়। এই উপলক্ষে আমাদের অন্নদাতা কৃষক ভাই-বোনেদেরও জানাই অসংখ্য শুভেচ্ছা! ‘বিবিধের মধ্যে ঐক্য’ — ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ — এই ভাবনার সৌরভ উৎসবের মধ্যে নিহিত আছে। আমরা দেখতে পাই, এই উৎসবগুলি প্রকৃতির সঙ্গে কতটা নিবিড় ভাবে জড়িত। প্রকৃতির সঙ্গে আমাদের নিবিড়তার আরও একটি সুন্দর উদাহরণ হল — উৎসবভিত্তিক ক্যালেণ্ডার। এই ক্যালেণ্ডারগুলিতে সারা বছরের উৎসবের সঙ্গে গ্রহ-নক্ষত্রের বিবরণও থাকে। এই প্রথাগত ক্যালেণ্ডারগুলি থেকে বোঝা যায়, প্রাকৃতিক এবং জ্যোতির্বিজ্ঞান সম্পর্কিত ঘটনাগুলির সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক কত প্রাচীন। চন্দ্র ও সূর্যের গতির উপর আধারিত এই চন্দ্র-সূর্য ক্যালেণ্ডার অনুযায়ী পরব ও উৎসবগুলির তিথি নির্ধারণ করা হয়। এটা নির্ভর করে কে কোন ক্যালেণ্ডার অনুসরণ করেন তার উপর। অনেক জায়গায় গ্রহ-নক্ষত্রের অবস্থানের ওপরই পরব, উৎসবের দিন নির্ধারিত হয়। গুড়ী-পড়ওয়া, চেটি-চণ্ড, উগাদি — এই সমস্ত উৎসব যেমন চন্দ্র ক্যালেণ্ডার অনুযায়ী পালিত হয়, সেই রকমই তামিল পুথাণ্ডু এবং বিষু, বৈশাখ, বৈশাখী, পয়লা বৈশাখ, বিহু ইত্যাদি পরব সূর্য ক্যালেণ্ডার অনুসারে পালন করা হয়। আমাদের অনেকগুলি পার্বণে নদী এবং জলকে রক্ষা করার বিশেষ উদ্দেশ্যটিও অন্তর্নিহিত থাকে। ছট পরবটি নদী এবং জলাশয়ে সূর্য উপাসনার সঙ্গে জড়িত। মকর সংক্রান্তিতেও লক্ষ-কোটি মানুষ পবিত্র নদীগুলিতে স্নান করেন। আমাদের পরব, উৎসবগুলি সামাজিক মূল্যেবোধেরও শিক্ষা দেয়। একদিকে যেমন এগুলির পৌরাণিক গুরুত্ব আছে, অপরদিকে এই প্রত্যেকটি পর্ব অত্যন্ত সহজভাবে জীবনে একে অপরের সঙ্গে ভ্রাতৃত্ববোধ গড়ে তোলার শিক্ষা ও প্রেরণা দেয়। আমি আপনারদের সবাইকে ২০১৯-এর অনেক অনেক শুভেচ্ছা জানাই এবং কামনা করি, এই সমস্ত উৎসবগুলিকে আপনারা খুব উপভোগ করুন। এই উৎসব উপলক্ষ্যে তোলা ফোটোগুলি আপনারা সবার সঙ্গে শেয়ার করুন যাতে ভারতের বৈচিত্র্য আর ভারতীয় সংস্কৃতির সৌন্দর্য সবাই দেখতে পান। আপনারা কুম্ভ নিয়ে অনেক কিছু শুনে থাকবেন। দেশ এবং সারা পৃথিবী থেকে লোক আসে কুম্ভে অংশগ্রহণ করতে। সন্ত-মহাত্মারা কুম্ভ মেলার জন্য এখন থেকেই পৌঁছতে শুরু করেছেন। সেখানে একসঙ্গে অনেক দেশের জাতীয় পতাকাউত্তোলন করা হয়েছিল। এবার কুম্ভে পরিচ্ছন্নতার ওপরও যথেষ্ট জোর দেওয়া হচ্ছে। আয়োজনে শ্রদ্ধার সঙ্গে স্বচ্ছতাও থাকলে অনেক দূর পর্যন্ত ভালো বার্তা পৌঁছবে। এবারের কুম্ভে সব তীর্থযাত্রী সঙ্গমে পবিত্র স্নানের পর অক্ষয় বটের পুণ্যদর্শন করতে পারবেন। এখন অক্ষয় বটের দ্বার সবার জন্য খুলে দেওয়া হয়েছে। আপনাদের কাছে আমার আবেদন, যখন আপনারা কুম্ভে যাবেন কুম্ভের আলাদা আলাদা বৈশিষ্ট্য এবং ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় অবশ্যই শেয়ার করবেন যাতে আরো বেশি সংখ্যক মানুষ কুম্ভে যেতে অনুপ্রাণিত হন। আধ্যাত্মের এই কুম্ভ ভারতীয় দর্শনের মহাকুম্ভ হোক। আস্থার এই কুম্ভ দেশাত্মবোধ ও জাতীয় সংহতিরও মহাকুম্ভ হোক। আমাদের জন্য সৌভাগ্যের কথা, দক্ষিণ আফ্রিকার রাষ্ট্রপতি শ্রী সিরিল রামাফোসা এবারের সাধারণতন্ত্র দিবসের প্রধান অতিথি রূপে ভারতে আসছেন। দক্ষিণ আফ্রিকাতেই মহাত্মা গান্ধী প্রথম সত্যাগ্রহ শুরু করেছিলেন এবং বর্ণবৈষম্যের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়িয়েছিলেন। উনি‘ফিনিক্স’ এবং‘টলস্টয়’ফার্ম স্থাপন করেছিলেন,যেখান থেকে সারা বিশ্বে শান্তি আরন্যায়েরজন্য আওয়াজ উঠেছিল। তিনি অতগুলো বছর কারাগারে কাটানোর সহন শক্তি এবং প্রেরণা পূজনীয় বাপুর থেকেই তো পেয়ে ছিলেন! দেশ এবং দেশবাসীর সুরক্ষাকে আরও মজবুত করার জন্য কি ধরনের পদক্ষেপ প্রয়োজন, সে বিষয়ে বিস্তৃত চর্চা হয়। সরদার প্যাটেল দেশের একতার জন্য তাঁর জীবন সমর্পণ করেছিলেন। ভারতের অখণ্ডতাকে অক্ষুণ্ণ রাখার জন্য তিনি সারা জীবন কাজ করেছেন। তাঁর মতে দেশের বিবিধতার মধ্যে দেশের ঐক্য নিহিত আছে। সরদার প্যাটেলের এই ভাবনার প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্যই একতার এই পুরস্কারের মাধ্যমে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধাঞ্জলি অর্পণ করতে চাই। আমার প্রিয় দেশবাসী, আগামী ১৩-ই জানুয়ারি গুরু গোবিন্দ সিং-এর জন্ম জয়ন্তী উৎসব। গুরু গোবিন্দ সিং পাটনাতে জন্ম গ্রহণ করেন। জন্মভূমি পাটনা, কর্মস্থল উত্তরভারত এবং জীবনের অন্তিম সময় নান্দেড়-এ। একভাবে বলতে গেলে পুরো ভারতবর্ষ তাঁর আশীর্বাদ পেয়েছে। তাঁর জীবনকালকে পর্যবেক্ষণ করলে সম্পূর্ণ ভারতের প্রতিচ্ছবি দেখতে পাওয়া যায়। তাঁর পিতা গুরু তেগবাহাদুর শহীদ হওয়ার পর মাত্র ৯ বছর বয়সে তিনি গুরুর আসন গ্রহণ করেন। শিখ গুরুদের ঐতিহ্য থেকেই গুরু গোবিন্দ সিং অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করার প্রেরণা পেয়েছিলেন। তিনি বলতেন, দুর্বল মানুষদের সঙ্গে লড়াই করে শক্তির প্রদর্শন করা যায় না। গুরু গোবিন্দ সিং-এর মতে মানুষের দুঃখ দূর করাই সব থেকে বড়ো সেবা। বীরত্ব, শৌর্য, ত্যাগ এবং ধর্মপরায়ণতায় পূর্ণ ছিলেন এই মহামানব। অস্ত্র এবং শাস্ত্রে ছিল তাঁর অসামান্য জ্ঞান। তিনি একদিকে যেমন ছিলেন একজন তীরন্দাজ, অন্যদিকে গুরুমুখী, ব্রজভাষা, সংস্কৃত, ফারসী, হিন্দি, উর্দু প্রভৃতি বিভিন্ন ভাষায় পারদর্শী। আমি আরও একবার শ্রী গুরু গোবিন্দ সিংজীকে প্রণাম জানাচ্ছি। আমার প্রিয় দেশবাসী, দেশে এমন কিছু ভালো ঘটনা ঘটে, যেগুলোর ব্যাপক চর্চা হয় না। এমনই একটি অভিনব প্রয়াস চালাচ্ছেFSSAI অর্থাৎ Food Safety and Standard Authority of India। মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশততম জন্মজয়ন্তী বর্ষ উপলক্ষে সারা দেশে বিভিন্ন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হচ্ছে। এই পর্যায়ে FSSAI সুরক্ষিত এবং স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলতে সচেষ্ট। ‘Eat Right India’ অভিযানের অংশ হিসাবে সারা দেশে ‘Swasth Bharat Yatra’ সংগঠিত হচ্ছে। এই অভিযান ২৭-শে জানুয়ারি পর্যন্ত চলবে। কখনও কখনও সরকারী সংগঠনগুলি পরিচালকের কাজ করে, কিন্তু এটা প্রশংসনীয় যে FSSAI এই সীমাবদ্ধতা থেকে বেরিয়ে জন জাগরণ এবং লোকশিক্ষার কাজ করছে। ভারত যখন স্বচ্ছ হবে, স্বাস্থ্যবান হবে তখনই ভারত সমৃদ্ধশালী হবে। ভালো স্বাস্থ্যের জন্য সব থেকে আগে প্রয়োজন পুষ্টিকর আহার। এই প্রসঙ্গে এই প্রচেষ্টার জন্য FSSAI-কে আন্তরিক অভিনন্দন জানাচ্ছি। আমি আপনাদের সকলকে এই অভিযানে যুক্ত হওয়ার জন্য আহ্বান জানাচ্ছি। আপনারা এতে অংশগ্রহণ করুন এবং বিশেষ করে শিশুদের এবিষয়ে অবহিত করার জন্য আমি আপনাদের অনুরোধ করছি। খাওয়ার গুরুত্বের বিষয়ে শিক্ষা ছোট বয়স থেকেই হওয়া প্রয়োজন। মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্তের ফলে ৪৮ লক্ষ ৪১ হাজার কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী ও ৬২ লক্ষ ৩ হাজার পেনশনভোগী উপকৃত হবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (২১শে অক্টোবর, ২০১৮) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে বারাণসীর কার্পেট এক্সপো-তে ভাষণ দেন। দেশ-বিদেশের অতিথি-অভ্যাগতদের স্বাগত জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রথম বারাণসীর দীনদয়াল হস্তকলা সাঙ্কুলে ‘ইন্ডিয়া কার্পেট এক্সপো’র আয়োজন করা হয়েছে। কার্পেট শিল্পক্ষেত্রে বারাণসী, ভাদোই এবং মির্জাপুর – গুরুত্বপূর্ণ এই তিন কেন্দ্রের উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, হস্তশিল্প এবং ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পগুলিকে উৎসাহিত করতে বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণ করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে হস্তশিল্পের দীর্ঘ ঐতিহ্য রয়েছে, সেক্ষেত্রে বারাণসীর এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি মহান সন্ত কবি কবীরের কথা উল্লেখ করেন যিনি ঐ অঞ্চলেরই বাসিন্দা ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্বাধীনতা সংগ্রামে এবং নিজেদের ওপর আস্থা বাড়িয়ে তুলতে হস্তশিল্প বরাবরই উৎসাহের অন্যতম উৎস হয়ে উঠেছে। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী, মহাত্মা গান্ধী, সত্যাগ্রহ এবং চরকার কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত বর্তমানে কার্পেটের বৃহত্তম উৎপাদনকেন্দ্র হয়ে উঠেছে এবং কার্পেটের বিশ্ব বাণিজ্যের ৩৫ শতাংশই ভারতের দখলে রয়েছে। কার্পেটের রপ্তানি উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। উঠতি মধ্যবিত্ত শ্রেণী এবং এক্ষেত্রে সরকারি সুযোগ-সুবিধা – এই দুটি বিষয়ই কার্পেট শিল্পের বিকাশে অন্যতম ভূমিকা নিয়েছে। পোর্ট ব্লেয়ারে তিনি শহীদ স্মারকে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করেন এবং সেলুলার জেল ঘুরে দেখেন। সেলুলার জেলে বীর সাভারকর সহ অন্যান্য স্বাধীনতা সংগ্রামীরা যে কক্ষগুলিতে ছিলেন, তিনি সেগুলি ঘুরে দেখেন। সুদীর্ঘ ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন এবং নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর মূর্তিতে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে শ্রদ্ধা জানান। ভারতীয় ভূ-খন্ডে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জাতীয় পতাকা উত্তোলনের ৭৫তম বার্ষিকী উদযাপন উপলক্ষে আয়োজিত এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী স্মারক ডাকটিকিট মুদ্রা এবং ছোট পুস্তিকা প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বিদ্যুৎ, যোগাযোগ এবং স্বাস্থ্য ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ কেবল ভারতের প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের প্রতীকীই নয়, সেই সঙ্গে ভারতীয়দের কাছে তীর্থস্থানের মতো। এই দ্বীপপুঞ্জ দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামীদের সমবেত দৃঢ় সংকল্পের কথা স্মরণ করিয়ে দেয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই দ্বীপপুঞ্জের মানুষের ক্ষমতায়ন ও উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, পর্যটন এবং কর্মসংস্থান সম্পর্কিত যেসব উন্নয়নমূলক প্রকল্পের আজ সূচনা হয়েছে, সেগুলি সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের অগ্রগতি ও লক্ষ্য পূরণে সহায়ক হবে। সেলুলার জেল এবং এই জেলের যে স্থানে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু ৭৫ বছর আগে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেছিলেন, সেই জায়গা ঘুরে দেখার কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, সেলুলার জেল, যেখানে হাজার হাজার স্বাধীনতা সংগ্রামী নিদারুণ দুঃখ-কষ্ট সহ্য করেছিলেন, সেটি তাঁর কাছে পূজ্য ভূমির মতো। দেশবাসী স্বাধীনতা সংগ্রামীদের আত্মবলিদান কখনও বিস্মৃত হবে না বলেও তিনি মন্তব্য করেন। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেতাজীর আহ্বানে সাড়া দিয়ে আন্দামানের বহু যুবক ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে নিজেদেরকে উৎসর্গ করেছিলেন। তিনি আরও বলেন, ১৯৪৩ সালের আজকের দিনটিতে নেতাজীর ত্রিবর্ণ রঞ্জিত জাতীয় পতাকা উত্তোলনের স্মরণেই আজ সুদীর্ঘ ১৫০ ফুটের জাতীয় পতাকা উত্তোলন করা হ’ল। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী রস আইল্যান্ডের নাম বদলে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু দ্বীপ, নীল আইল্যান্ডের নাম বদলে শহীদ দ্বীপ এবং হ্যাভলক আইল্যান্ডের নাম বদলে স্বরাজ দ্বীপ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতীয়রা আজ নেতাজীর দূরদৃষ্টির সঙ্গে সাযুজ্য রেখে এক শক্তিশালী ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সরকার সারা দেশে যোগাযোগ ব্যবস্থাকে আরও শক্তিশালী করে তোলার কাজ করছে। দেশের বীর ও বরেণ্য ব্যক্তিত্বদের স্মরণ করা ও সম্মান জানানোর মতো বিষয়গুলি জাতীর অখন্ডতা বোধকে আরও মজবুত করতে সাহায্য করে। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু এবং সর্দার প্যাটেলের নামে জাতীয় পুরস্কার প্রদানের কথা ঘোষণা করা হয়েছে বলে তিনি জানান। নেতাজী ও সর্দার প্যাটেলের মতো অন্যান্য নেতাদের অনুপ্রেরণাতেই নতুন ভারত গড়ে তোলা হচ্ছে, যার কেন্দ্রস্থলে রয়েছে উন্নয়ন। শ্রী মোদী বলেন, পরিবেশের চাহিদা মোতাবেক এই দ্বীপপুঞ্জের উন্নয়ন ঘটানো হবে। শিল্পোন্নয়নের অঙ্গ হিসাবে পর্যটন, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে। আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জকে যতটা সম্ভব স্বনির্ভর করে তুলতে যাবতীয় প্রয়াস নেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী পোর্ট ব্লেয়ার বন্দরের সম্প্রসারণের কথা বলেন। তিনি জানান, বন্দরের সম্প্রসারণের কাজ শেষ হলে বড় মাপের জাহাজের রক্ষণা-বেক্ষণের কাজ সম্ভব হবে। এই দ্বীপপুঞ্জের গ্রামীণ সড়কের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে দু’সপ্তাহের মধ্যে রিপোর্ট চেয়ে পাঠিয়েছেন বলে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রিপোর্ট পাওয়ার পর, কেন্দ্রীয় সরকার তা খতিয়ে দেখে যথাসম্ভব সহায়তার চেষ্টা করবে। প্রধানমন্ত্রী আরও জানান, বীর সাভারকর আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের নতুন একটি সুসংহত টার্মিনাল ভবন গড়ে তোলা হচ্ছে। চেন্নাই থেকে সমুদ্রের তলদেশ দিয়ে অপ্টিক্যাল ফাইবার কেবল মারফৎ এই দ্বীপপুঞ্জকে যুক্ত করার কাজ শেষ হলে আন্দামান ও নিকোবরে ইন্টারনেট যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি পাবে। প্রকল্পগুলির সংস্থাপিত উৎপাদন ক্ষমতাহবে ৭ হাজার মেগাওয়াট। এই ১০টি ইউনিট দেশের পরমাণু বিদ্যুৎ উৎপাদনকে বিশেষভাবেউৎসাহিত করবে।
শক্তি ক্ষেত্রে দক্ষতাকে অগ্রাধিকার। > আবর্জনা থেকে সম্পদ আহরণের আন্দোলন। শৌচালয়নির্মাণ ও পুরোনো অভ্যাসপরিবর্তন নিয়ে প্রচারকে সমানগুরুত্ব দিতে হবে। কারণ, শৌচালয়েরব্যবহার বৃদ্ধি, প্রকাশ্যেশৌচকর্ম মুক্ত গ্রামের লক্ষ্যপূরণে সহায়ক হবে। কেন্দ্র ওরাজ্য উভয় স্তরেই পেশাদারসংস্থাকে যুক্ত করে এই কর্মসূচিরজন্য কৌশল নির্ধারণ, রূপায়ণপদ্ধতি ও কাজের অগ্রগতির ওপরনজর রাখতে হবে। কেন্দ্রীয়সরকারকে মানুষের অভ্যাসপরিবর্তন নিয়ে প্রচারের জন্যতহবিলের বরাদ্দ ২৫ শতাংশবাড়াতে হবে। পরিচ্ছন্নতানিয়ে প্রচারের কাজে রাজনীতিও সমাজের অগ্রগণ্য ব্যক্তিত্বও বিখ্যাত মানুষদের কাজেলাগাতে হবে। স্কুলের পাঠ্যসূচিতে’স্বচ্ছভারত’ বিষয়টিকেঅন্তর্ভুক্ত করতে হবে। সচেতনতাবিষয়ে প্রচারের জন্য ছাত্রদেরনিয়ে’স্বচ্ছতাসেনানী’ নামেদল গড়া যেতে পারে। কেন্দ্র ওরাজ্য সরকারগুলি স্বচ্ছ ভারতবন্ড ছাড়তে পারে। নিতিআয়োগকে এই অভিযানের জন্যআন্তঃবিভাগীয় ক্ষেত্রেরসাধারণ মঞ্চ হিসেবে ব্যবহারকরা যদেতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লীতে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে ঘূর্ণীঝড় ফণী’র প্রস্তুতি পর্যালোচনা করেছেন। বৈঠকে মন্ত্রিসভার সচিব, প্রধানমন্ত্রীর মুখ্যসচিব, প্রধানমন্ত্রীর অতিরিক্ত মুখ্যসচিব, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিব সহ ভারতীয় আবহাওয়া দপ্তর, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী, জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কর্তৃপক্ষ এবং প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উচ্চপদস্হ আধিকারিকরা উপস্হিত ছিলেন। বৈঠকে ঘূর্ণীঝড় ফণী’র সম্ভাব্য গতিপথ এবং এই ঘূর্ণীঝড়ের প্রেক্ষিতে আগাম সতর্কতামূলক ব্যবস্হা গ্রহণ ও প্রস্তুতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়েছে। বিহারের রাজ্যপাল লালজি ট্যান্ডন, মুখ্যমন্ত্রী নীতিশ কুমার, উপ-মুখ্যমন্ত্রী সুশীল মোদী এবং কেন্দ্রীয় খাদ্য ও উপভোক্তা বিষয়ক মন্ত্রী রামবিলাস পাসোয়ান সহ বহু বিশিষ্ট ব্যক্তি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন। প্রকল্পগুলির উদ্বোধনের পর প্রধানমন্ত্রী এক জনসভায় ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী এই অনুষ্ঠানে জগদীশপুর-বারাণসী প্রাকৃতিক গ্যাস পাইপলাইনের অন্তর্গত ফুলপুর থেকে পাটনা পর্যন্ত অংশের উদ্বোধনও করেন। অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৫ সালের জুলাই মাসে তিনিই এই প্রকল্পের সূচনা করেছিলেন। তিনি আরও স্মরণ করেন, এটি এমনই একটি প্রকল্প যেটির শিলান্যাসও তিনি করেছিলেন এবং সূচনাও তিনিই করছেন।তিনি বলেন, “এই প্রকল্পের ফলে পাটনার বিভিন্ন এলাকায় গ্যাস সরবরাহের পাশাপাশি বারাউনি সার কারখানা এবং স্থানীয় অন্যান্য কারখানায় গ্যাস সরবরাহ করার বিষয়টি সুনিশ্চিত হবে।” গাস-ভিত্তিক এই প্রকল্পের ফলে স্থানীয় এলাকার মানুষের কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়বে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। এই অঞ্চলের ওপর অগ্রাধিকারের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “পূর্ব ভারত এবং বিহারের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়টি সুনিশ্চিত করতে সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।” প্রধানমন্ত্রী উর্জা গঙ্গা প্রকল্পের আওতায় বারাণসী, ভুবনেশ্বর, কটক, পাটনা, রাঁচি এবং জামশেদপুরকে গ্যাস পাইপলাইনের মাধ্যমে সংযুক্ত করা হচ্ছে। এই প্রকল্পগুলির মাধ্যমে বিশেষ করে, পাটনা এবং নিকটবর্তী এলাকায় শক্তির সরবরাহ সুনিশ্চিত হবে। দরিদ্রদের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের বিষয়টি উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “এনডিএ সরকারের দ্বিমুখী উন্নয়নমূলক কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং সমাজের প্রান্তিক মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, যাঁরা বিগত ৭০ বছর ধরে ন্যূনতম সুযোগ-সুবিধার জন্য লড়াই করে আসছেন।” বিহারে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার সম্প্রসারণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাজ্যে স্বাস্থ্য পরিষেবা পরিকাঠামো সম্প্রসারণের ক্ষেত্রে দিনটি ঐতিহাসিক হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী পাটনায় নদী বিকাশ প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের উদ্বোধন করেন। তিনি ৯৬.৫৪ কিলোমিটার দীর্ঘ করমালিচক নিকাশি ব্যবস্থারও শিলান্যাস করেন। এই নিকাশি ব্যবস্থার আওতাধীন বাঢ়, সুলতানগঞ্জ এবং নওগাছিয়ায় প্রকল্পের তিনি সূচনা করেন। রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় ২২টি অম্রুত প্রকল্পেরও তিনি শিলান্যাস করেন। প্রধানমন্ত্রী ৯ এমএমটি ক্ষমতাসম্পন্ন বারাউনি শোধনাগার সম্প্রসারণ প্রকল্পেরও শিলান্যাস করেন। এছাড়া, দুর্গাপুর থেকে মুজফফরপুর এবং পাটনা পর্যন্ত পারাদ্বীপ-হলদিয়া-দুর্গাপুর এলপিজি পাইপলাইন সম্প্রসারণ প্রকল্পেরও তিনি শিলান্যাস করেন। প্রধানমন্ত্রী, বারাউনি-কুমেদপুর, মুজফফরপুর-রক্সৌল, ফাতুহা-ইসলামপুর, বিহার শরিফ-দানিয়াওয়ান রেললাইনের বিদ্যুতিকরণ প্রকল্পের সূচনা করেন। অনুষ্ঠানে, রাঁচি-পাটনা এসি সাপ্তাহিক এক্সপ্রেস ট্রেনটিরও যাত্রার সূচনা করা হয়। তরুণ বিজ্ঞানীদের এই সাফল্যে অনুপ্রাণিত হয়ে দেশবাসীর কাজে উদ্বুদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান তিনি। শ্রী মোদী বলেন, ছাত্রদের মধ্যে বিজ্ঞান মনস্কতা গড়ে তোলা প্রয়োজন। বিজ্ঞান সংক্রান্ত প্রতিষ্ঠানগুলিতে উদ্বাবনের উপযোগী পরিবেশ সৃষ্টি হবে বলে আশা প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। ওড়িশার এই বিজ্ঞান শিক্ষা ও গবেষণা সংস্থাটির কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কয়লা থেকে গ্যাস আহরণ, বিশুদ্ধ জ্বালানি, নীল অর্থনীতি এবং ২০২২ সালের মধ্যে সকলের জন্য বাসস্থানের লক্ষ্যে উদ্বাবন প্রক্রিয়ার সম্ভাবনাকে কাজে লাগাতে হবে। বৈঠকের সূচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, খরা পরিস্থিতির মোকাবিলায় এবং জলসঙ্কট নিরসনেকেন্দ্র ও রাজ্যকে একযোগে কাজ করে যেতে হবে। খরা রোধে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি বিভিন্ন ব্যবস্থা গ্রহণের ওপরও বিশেষ জোর দেন তিনি। বৈঠকে আরও জানানো হয় যে রাজ্যের ৭৭ শতাংশ গৃহস্থ বাড়িতেই এখন পাইপলাইন মারফৎ জল সরবরাহ করা হচ্ছে। পর পর দু’বছর বৃষ্টিপাতে ঘাটতি সত্ত্বেও রাজ্যের জল পরিস্থিতি এতটাই উন্নত করে তোলা হয়েছে যে গ্রামীণ প্রত্যন্ত এলাকায় মাত্র ৫৬৮টি ট্যাঙ্কারের সাহায্যেই জল পৌঁছে দেওয়া গেছে। বৈঠকে পর্যালোচনাকালে প্রকাশ পায় যে অতিক্ষুদ্র সেচ ব্যবস্থার ক্ষেত্রে গুজরাট উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির স্বাক্ষর রেখেছে। রাজ্যের ৩,৭৮৯টি গ্রামে এই ব্যবস্থায় সেচ সম্প্রসারিত হয়েছে। বৃষ্টিপাতে ঘাটতি সত্ত্বেও রাজ্য সরকার গৃহীত বিভিন্ন ব্যবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে খরা মোকাবিলা করার মতো অবস্থায় এখন পৌঁছে গেছে গুজরাট। উপর্যুপরি দুটি বছরে বৃষ্টিপাতের অভাবে খরা পরিস্থিতির সৃষ্টি হলেও রাজ্যে শস্য উৎপাদিত হয়েছে মোট স্বাভাবিক উৎপাদনের ৯৫ শতাংশ। এই প্রসঙ্গের অবতারণাকালে রাজ্যের উদ্যানপালন এবং নগদ শস্য ফলনের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজনের ওপর জোর দেন প্রধানমন্ত্রী। মৎস্যচাষ, মৌমাছি পালন, মুক্তোচাষ ইত্যাদি সম্পর্কেও বিস্তারিত আলোচনা হয় আজকের বৈঠকে। আন্তর্জাতিক নারী দিবসে ‘নারী শক্তি’র চালিকা-শক্তিকে অভিবাদন জানানপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক নারী দিবসে অদম্য নারী শক্তিকে আমি কুর্নিশ জানাই। মহিলাদের ক্ষমতায়নে উৎসাহ দিতে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত নিতে পেরে আমরা গর্বিত। পরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ল্যান্স নায়েক হনুমানথাপ্পার অদম্য মনোবল ও সহনশীলতা ভাষায় প্রকাশ করা সম্ভব নয়। তিনি একজন বীর সেনানী। দেশের কন্যাসন্তানদের ক্ষমতা, দক্ষতা এবং সাফল্যকে সম্মান জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল উত্তরপ্রদেশের সন্তকবীর নগর জেলার মাঘার সফর করবেন। মহান সাধু ও কবি কবীরের ৫০০তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে তিনি সেখানে সন্তকবীর সমাধিতে পুষ্পার্ঘ্য নিবেদন করবেন। তিনি চাদর চড়াবেন সন্ত কবীরের মাজারে। সন্তকবীর গুহাটিও পরিদর্শন করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকেবুধবার অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য ভারত ও স্পেনের মধ্যে সমঝোতাপত্রস্বাক্ষরের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। · এই প্রতিষ্ঠানে গড়ে তোলা হবে ৭৫০ শয্যাবিশিষ্ট একহাসপাতাল যেখানে ট্রমা সেন্টারের সুযোগ-সুবিধাও যুক্ত থাকবে। · প্রতি বছর এমবিবিএস পঠন-পাঠনের জন্য ১০০ জনছাত্রছাত্রী ভর্তির সুযোগ পেতে পারেন, এ ধরনের একটি মেডিকেল কলেজও গড়ে তোলা হবেএইম্‌স-এর মধ্যে। এই ঘটনা আমাদের অনুপ্রাণিত করে । এই প্রতিনিধিদলে ছিলেন শিয়াপন্থী মৌলবী মৌলানা কালবে জওয়াদ, আন্তর্জাতিক ইসলাম বিষয়ে বিশেষজ্ঞ শ্রী কামার আগা এবং শ্রী শাহিদ সিদ্দিকি। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সৌদি আরবে সম্প্রতি এক সাফল্যপূর্ণ সফরের জন্য প্রধানমন্ত্রীকে অভিনন্দন জানান। তাঁরা বলেন, পশ্চিম এশিয়া, মধ্য এশিয়া ও উত্তর আফ্রিকার মানুষ বিশেষ করে যুবসম্প্রদায় শ্রী নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নমুখী কর্মসূচি সম্পর্কে অত্যন্ত প্রীত আর তাঁরা ভারতের সঙ্গে সুসম্পর্ক চান। এই প্রতিনিধিদলের সদস্যরাও শ্রী নরেন্দ্র মোদীর উন্নয়নমুখী কর্মসূচির এবং তার সফল রূপায়ণের ভুয়সী প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিধিদলকে ধন্যবাদ জানান এবং উন্নয়নের প্রতি তাঁর অঙ্গীকারের পুনরাবৃত্তি করে বলেন, শিক্ষার ওপর, বিশেষ করে কন্যা সন্তানদের শিক্ষার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সর্বোচ্চ আদালতের ২৭.২.২০১২ তারিখের রিট আবেদন (দেওয়ানী) ২০০২-এর ৫১২ এবং রিটআবেদন ২০২০-এর ৬৬৮-তে নদীগুলির নেটওয়ার্কিং সংক্রান্ত বিষয়ের পরিপ্রেক্ষিতে দেওয়ারায়ের মান্যতায় পরিস্হিতি-তথা-উন্নয়ন প্রতিবেদন এবং “ নদীগুলির আন্তর্সংযোগের জন্য বিশেষ কমিটি গঠন ”- এর বিষয়টি অনুমোদন করেছে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এই অনুমোদনের ফলে ভারতসরকারের জাতীয় পরিপ্রেক্ষিত পরিকল্পনা ১৯৮০-এর আওতায় মূল্যবান নদীগুলিরআন্তর্সংযোগ প্রকল্প তদারকিতে সহায়তা হবে। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য যে এই চুক্তি সম্পাদনের ক্ষেত্রে দু’দেশেরই ব্যয় সংক্রান্ত কোনরকম বাধ্যবাধকতা থাকবে না। নয়াদিল্লি, ১৬ মার্চ, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এখানে মানেকশ সেন্টারে ভারতীয় সেনাবাহিনী আয়োজিত ‘ভারত ও প্রথম বিশ্বযুদ্ধ’ শীর্ষক এক স্মারক প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের বেশ কয়েকজন সম্মানিত সেনানীর বংশধরদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে তিনি অভিভূত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠকটি। জমি হস্তান্তরের পর সেখানে পঞ্চকুলার মনসা দেবী কমপ্লেক্সে(এমডিসি) ৬০ মিটার দীর্ঘ সড়ক নির্মাণ করা হবে। জমি হস্তান্তরের মাধ্যমে এই সড়ক নির্মাণের ফলে সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের বিকাশ ও উন্নয়নের পাশাপাশি আঞ্চলিক ক্ষেত্রে কর্মসংস্থানের বিশেষ সুযোগও সৃষ্টি হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার বিদ্যুৎ, কয়লা, আবাসন, বন্দর এবং ডিজিট্যাল ইন্ডিয়া সহ মুখ্য পরিকাঠামো বিষয়ক ক্ষেত্রসমূহের অগ্রগতি পর্যালোচনা করেছেন। বিদ্যুৎ পৌছায় নি এমন গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ দ্রুত গতিতে এগুচ্ছে বলে প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয়। বিদ্যুৎহীন ১৮,৫০০টি গ্রামের মধ্যে ইতিমধ্যে ৬০০০ গ্রামে বৈদ্যুতিকরণের কাজ হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীকে এও জানানো হয়েছে যে, গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ সমূহের অগ্রগতি ‘জিও-ট্যাগিং’ সহ অন্যান্য পরিশীলিত প্রযুক্তি প্রয়োগ করে নজরে রাখা হচ্ছে। আধিকারিকরা ব্যাখ্যা করে বলেন, অরুনাচল প্রদেশ-এর মতো রাজ্যের দূরবর্তী ও দুর্গম এলাকায় বিদ্যুৎ পৌঁছে দিতে অফ-গ্রীড ব্যবস্থা, যেমন সৌর প্যানেল-এর ব্যবহার করা হচ্ছে। সারা দেশে এলইডি বাল্ব বন্টনের কাজের অগ্রগতিও খতিয়ে দেখা হয়। আগামী ২০২২ সালের মধ্যে ১৭৫ গিগা-ওয়াট (জি ডব্লু) পুনর্নবীকরনযোগ্য শক্তি উৎপাদন ক্ষমতা অর্জনের লক্ষ্যপূরণে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতি হয়েছে। এখন পর্যন্ত মোট ৩৯.৫ গিগা-ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন পুনর্নবীকরনযোগ্য শক্তি উৎপাদন ব্যবস্থা স্থাপন করা হয়েছে। এবছরে কোল ইন্ডিয়া লিমিটেডের উৎপাদন বিগত ৫ বছরের গড় বৃদ্ধি ৩ শতাংশের তুলনায় ৯.২% হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েতগুলিতে ব্রডব্যান্ড সংযোগ স্থাপনের কাজ ত্বরান্বিত করতে আশু উদ্যোগ গ্রহনের আহ্বান জানান। দেশের গুরুত্বপূর্ণ পর্যটনক্ষেত্রগুলিতে ওয়াই-ফাই সংযোগ দেওয়ার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রী খোঁজখবর নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীকে জানানো হয় যে, এখন পর্যন্ত এই ধরণের ১২টি স্থানে সার্বজনীন ওয়াই-ফাই সংযোগ দেওয়া হয়েছে। নকশালপন্থী অধ্যুষিত এলাকাগুলিতে মোবাইল সংযোগ দেওয়ার কাজের অগ্রগতি সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয়। ঐসব এলাকায় এখন পর্যন্ত ১৩৭১টি টাওয়ার বসানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী সকলের জন্য আবাসন প্রকল্পের কাজে অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন। আধুনিক প্রযুক্তি এবং স্থানীয় নির্মাণ সামগ্রীর যথাযথ ব্যবহার করে এই প্রকল্পের দ্রুত রূপায়নের জন্য সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন। বন্দরক্ষেত্রসমূহ পর্যালোচনা করে সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের জাহাজ ফিরে যাওয়ার গড় সময়-এর বিষয়ে আন্তর্জাতিক মান পূরণ করতে জরুরীভিত্তিতে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। পুরস্কারবিজয়ীদের সঙ্গে আলাপচারিতার সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন যে সাহসিকতার যে কোন কাজেরমধ্যে মনোবল ও দ্রুত সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতার পরিচয় পাওয়া যায়। নেতাজিসুভাষ চন্দ্র বসুর জন্মবার্ষিকীর দিনটির তাৎপর্যের কথা পুরস্কার বিজয়ীদের স্মরণকরিয়ে দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে দেশনেতাদের জীবনী গ্রন্থ, ক্রীড়াবিদদের জীবনকাহিনী এবং যাঁরা জীবনে মহত্বের স্বাক্ষর রেখেছেন, তাঁদের সম্পর্কে রচিত গ্রন্থ আরওবেশি করে পড়া উচিৎ। যে খ্যাতি ও প্রশংসা শিশুরাসাহসিকতার জন্য অর্জন করছে তা যাতে কোনভাবেই জীবনে উন্নতির পথে বাধা হয়ে না দাঁড়ায়সেদিকও দৃষ্টি রাখতে হবে তাদের। অনুষ্ঠানেউপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় নারী ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রী শ্রীমতী মানেকা গান্ধীও। কন্যা ভ্রূণ হত্যাবন্ধ করতে এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করতে পারেন মহিলা গ্রাম প্রধানরা। আজ গান্ধীনগরেমহিলা গ্রাম প্রধানদের এক সম্মেলন ‘স্বচ্ছ শক্তি, ২০১৭’-তে ভাষণদানকালে একথা বলেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ কর্মসূচি সম্পর্কেতিনি বক্তব্য রাখছিলেন এদিনের সম্মেলনে। সম্মেলনে আগত মহিলাগ্রাম প্রধানদের স্বচ্ছতা রক্ষা কর্মসূচির গুরুত্বকে অটুট রাখার পরামর্শ দেনপ্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, স্বচ্ছতা, অর্থাৎ পরিচ্ছন্নতাকে একটি অভ্যাস রূপে গড়েতোলা উচিৎ। যাবতীয় অপরিচ্ছন্নতা দূর করে এবং নোংরা আবর্জনা পরিষ্কার করে আমরা এমনএক পরিবেশ গড়ে তুলতে পারি যাতে বিশেষভাবে লাভবান হবেন দেশের দরিদ্র জনসাধারণ। আজকের সম্মেলনেমহিলা গ্রাম প্রধানদের সম্মানিত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০১৯ সালে মহাত্মাগান্ধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকী আমরা পালন করতে চলেছি। যে স্বচ্ছতা কর্মসূচির সঙ্গেমহিলা গ্রাম প্রধানরা আজ যুক্ত রয়েছেন, সে সম্পর্কে মহাত্মা গান্ধী একদা বলেছিলেনযে রাজনৈতিক স্বাধীনতার থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়ে তোলা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ তাঁর নয়াদিল্লির বাসভবনে স্বাগত জানান বারাণসী সংসদীয় কেন্দ্রের গ্রাম প্রধানদের। এ পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীরসঙ্গে সাক্ষাৎকারের জন্য আগত ঐ সংসদীয় এলাকার গ্রাম প্রধানদের এটি হল চতুর্থ দল। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার সক্রিয়তা-প্রবণ সুশাসন ও সময়ানুগ রূপায়ণের তথ্য প্রযুক্তি ভিত্তিক বহুপাক্ষিক মঞ্চ প্রগতির মাধ্যমে তাঁর ষষ্ঠ আলাপচারিতামূলক বৈঠকে পৌরোহিত্য করেন। এই পর্যালোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী বিশেষ করে দেশের ১৭টি রাজ্যে সৌরশক্তি পার্ক গড়ার কাজ কতটা এগিয়েছে তা পর্যালোচনা করেন। তিনি সৌরশক্তি প্রকল্পগুলির দ্রুত রূপায়ণের অনুকূল কাঠামোগত নীতি ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য রাজ্যগুলিকে অনুরোধ করেন। তিনি এই সঙ্গে পেটেন্টের জন্য আবেদনপত্র পেশ করার ব্যবস্থা ঢেলে সাজার এবং এব্যাপারে আবেদনপত্রের সংখ্যা কমাতেও বলেন। প্রধানমন্ত্রী রেল, মেট্রোরেল, কয়লা ও আকরিক লোহার খনন, সড়ক, শক্তি, বিভিন্ন রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা অসামরিক বিমান পরিবহণ সহ বিভন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো ক্ষেত্রে পরিকাঠামোগুলির অগ্রগতির কাজও পর্যালোচনা করে দেখেন। উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী অনুরোধে প্রধানমন্ত্রী লক্ষ্ণৌ মেট্রোরেল প্রকল্পের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন এবং এই প্রকল্পটি ‘প্রগতি’র আওতায় পর্যালোচনায় আসার পর নানা ক্ষেত্রে ছাড়পত্র চটপট মেলায় সন্তোষপ্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী এই সঙ্গেই ওড়িশার খুরদা ও বোলাঙ্গিরের মধ্যে নতুন ব্রডগেজ রেল যোগাযোগ প্রকল্পের কাজের অগ্রগতিও ওড়িশা সরকারের অনুরোধে খতিয়ে দেখেন। শ্রী নরেন্দ্র মোদী সিকিমের প্যাকিয়ং বিমানবন্দরের নির্মাণ কাজের অগ্রগতি খতিয়ে দেখেন এবং ওই রাজ্যে পর্যটন উন্নয়ন ও যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নতিতে এই প্রকল্প অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে বর্ণনা করে সিকিমকে এই প্রকল্পটি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে রূপায়ণ করার জন্য অতিসক্রিয়তা প্রদর্শনের অনুরোধ জানান। অন্যান্য প্রকল্পের মধ্যে মুম্বাই মেট্রো প্রকল্পের তৃতীয় রেলপথ (কোলাবা থেকে বান্দ্রা হয়ে এস ই ই পি জেড পর্যন্ত) এবং পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির গুরুত্বপূর্ণ কয়লা, লৌহ খনি প্রকল্পগুলির অগ্রগতির কাজ খতিয়ে দেখেন। প্রধানমন্ত্রী এরই পাশাপাশি আফগানিস্তানের সংসদভবন ও সালমা ড্যাম নির্মাণ সংক্রান্ত ভারতীয় প্রকল্পগুলির অগ্রগতির কাজও খতিয়ে দেখেন। তিনি সংশ্লিষ্ট দফতরগুলিকে সার্কভুক্ত দেশগুলিতে ভারতের নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্প রূপায়নের কাজ দ্রুতগতিতে সেরে ফেরতে নির্দেশ দেন। কন্টেনার কর্পোরেশন অফ ইন্ডিয়া, অর্থাৎ কনকর বিশাখাপত্তনমে এই পার্কটি গড়ে তুলবে। এই জমি বিনিময়ের ফলে উপকৃত হবে এ এ আই এবং ভি পি টি। ‘যুবশক্তি : ভবিষ্যৎ ভারত সম্পর্কে একচিন্তাভবনা’ শীর্ষক রাজ্য পর্যায়ের এক যুব সম্মেলনে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমেভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সমাজ সংস্কার প্রচেষ্টাও যুক্ত ছিল তাতে। সংহতি যে কোনও ধরণের উগ্রবাদকে দমন করতে পারে বলে মনে করেনতিনি। সাফল্য অর্জনে সংকল্পবদ্ধ হওয়ার জন্য তরুণ ও যুবকদের আহ্বান জানান শ্রীনরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, জাতি গঠনের কাজে তরুণ ও যুবশক্তির উদ্যোগী হওয়াপ্রয়োজন। প্রসঙ্গত, মুদ্রা যোজনা, স্বনির্ভর কর্মসংস্থান এবং দক্ষতা বিকাশ কর্মসূচিরকথাও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী ভিয়েতনামেরজাতীয় দিবসে সেদেশের মানুষকেশুভেচ্ছা জানিয়েছেন। নিস, ভিয়েনা এবং লোকার্নো চুক্তি সংযোজনের ফলে আন্তর্জাতিক স্তরে শ্রেণীবিন্যাসের পদ্ধতি অনুযায়ী ট্রেডমার্ক এবং নকশা পরীক্ষার জন্য ভারতের মেধাস্বত্ত্ব দপ্তরের সুবিধা হবে। এর ফলে, ভারতীয় নকশা, বৈশিষ্ট্য এবং পণ্য আন্তর্জাতিক মানের শ্রেণীবিন্যাস পদ্ধতির সুযোগ গ্রহণের সুবিধা পাবে। ভারতে মেধাস্বত্ত্ব সুরক্ষার প্রশ্নে বিদেশি বিনিয়োগকারীরা এই সংযোজনের ফলে প্রত্যয়ী হবেন। মহাবীর জন্মজয়ন্তী উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুক্রবার এক ভিডিওকনফারেন্সের মাধ্যমে সুরজকুন্ডের রেল বিকাশ শিবিরে ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, আর্থিক দিক থেকে রেলকে আরওশক্তিশালী হয়ে উঠতে হবে। এর ফলে, রেলের জন্য যাঁরা কাজ করছেন, তাঁরা বিশেষভাবেউপকৃত হবেন এবং সেই সঙ্গে সার্বিক কল্যাণ নিশ্চিত হবে সমগ্র দেশের। আজ গুজরাটের গান্ধীধামে কান্দলা পোর্ট ট্রাস্টের কয়েকটি প্রকল্পের সূচনা করেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনিবলেন, কচ্ছ-এর অধিবাসীরা জলের গুরুত্ব সম্পর্কে যথেষ্ট মাত্রায় সচেতন। কচ্ছ এলাকারগৌরবময় ইতিহাস এবং সাংস্কৃতিক সমৃদ্ধির বিভিন্ন দিক প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন তাঁরভাষণে। শ্রীমোদী বলেন, বিশ্ব বাণিজ্যে একটি বিশেষ স্থান অধিকারের লক্ষ্যে শ্রেষ্ঠ বন্দরব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে ভারতকে। প্রধানমন্ত্রীবলেন, ভারতের অংশগ্রহণ ও সহযোগিতায় গড়ে তোলা হচ্ছে ইরানের চাবাহার বন্দর যাকান্দলা বন্দরের প্রসার ও উন্নয়নকে বিশেষভাবে উৎসাহিত করবে। ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরসম্মেলন কেন্দ্র সম্পর্কেও এক সংক্ষিপ্ত বক্তব্য পেশ করেন তিনি। আগামীপাঁচ বছর জাতির সেবায় যথাসাধ্য অবদানের জন্য সঙ্কল্পবদ্ধ হওয়ার ডাক দেনপ্রধানমন্ত্রী। পণ্ডিতদীনদয়াল উপাধ্যায়ের জন্ম শতবর্ষ উদযাপিত হচ্ছে সারা দেশে – এর উল্লেখ করে কান্দলাপোর্ট ট্রাস্টের নাম “দীনদয়াল পোর্ট ট্রাস্ট – কান্দলা” রাখার প্রস্তাব দেনপ্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল পরিষেবা ক্ষেত্রে সৃজনশীল কাজকর্ম বন্টনে এবং বিনিয়োগের সঙ্গে সঙ্গেই মুনাফা অর্জনে এই চুক্তিগুলি সাহায্য করবে। এমনকি, ব্যবসার বৃদ্ধির পাশাপাশি এক প্রগতিশীল অর্থ ব্যবস্থার বিকাশে অবদান যোগানোর ক্ষেত্রেও এই চুক্তিগুলি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি কুয়ালালামপুরে আসিয়ান সম্মেলনের ফাঁকে শনিবার গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের প্রধানমন্ত্রী শ্রী লি কেকিয়াং-এর সঙ্গে বৈঠক করেন| মৌলিক পদার্থবিদ্যায় অসাধারণ সাফল্যের স্বীকৃতিতে ‘স্পেশাল ব্রেকথ্রু প্রাইজ’-এ সম্মানিত ভারতীয় বিজ্ঞানীদের অভিনন্দিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “মৌলিক পদার্থবিদ্যায় যে সমস্ত ভারতীয় বিজ্ঞানী ‘স্পেশাল ব্রেকথ্রু প্রাইজ’-এ সম্মানিত হয়েছেন তাঁদের অভিনন্দন জানাই। সমঝোতা/নথিপত্র উন্নত সার্বিক অর্থনৈতিক অংশিদারিত্ব চুক্তির দ্রুত সাফল্য নিয়ে যৌথ বিবৃতি কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী সুরেশ প্রভু সেদেশের বাণিজ্য, শিল্প ও শক্তি বিষয়ক মন্ত্রী কিম হিউন-চোঙ ভারত ও দক্ষিণ কোরিয়ার মধ্যে সুসংহত অর্থনৈতিক অংশিদারিত্ব চুক্তি সম্পর্কে চলতি আলোচনার পথ প্রশস্ত করতে চিংড়ি, শামুক ও প্রক্রিয়াজাত মাছ সহ অবাধ বাণিজ্যের গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রগুলির চিহ্নিতকরণ। শিল্প বাণিজ্য সহায়ক ব্যবস্হাপনা কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী সুরেশ প্রভু সেদেশের বাণিজ্য, শিল্প ও শক্তি বিষয়ক মন্ত্রী কিম হিউন-চোঙ শিল্প বাণিজ্য ক্ষেত্রে সহায়ক ব্যবস্হাপনায় সহযোগিতার জন্য সরকারি আধিকারির ও সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞদের নিয়ে গঠিত সহযোগিতা কমিটির মাধ্যমে আলাপ-আলাচনা ও তথ্য বিনিময় করে পণ্য ব্যবস্হাপনা, ভর্তুকিপ্রদান ও সুরক্ষামূলক ব্যবস্হা গড়ে তোলা ভবিষ্যৎ কৌশল নির্ধারক গোষ্ঠী সংক্রান্ত্র সমঝোতাপত্র কেন্দ্রীয় বাণিজ্য ও শিল্পমন্ত্রী সুরেশ প্রভু এবং কেন্দ্রীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্দ্রী ডঃ হর্ষবর্ধন সেদেশের বাণিজ্য, শিল্প ও শক্তি বিষয়ক মন্ত্রী হিউন-চোঙ এবং বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্দ্রী ইউ ইয়ং মিন চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের সুযোগ-সুবিধাগুলিকে কাজে লাগিয়ে বাণিজ্যিকিকরণের জন্য আধুনিক প্রযুক্তির মনোন্নয়নে সহযোগিতা গড়ে তোলা। এইজন্য ইন্টারনেট অফ থিংক্স, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, বিগ ডেটা, স্মার্ট ফ্যাক্টরি, থ্রি-ডি মুদ্রণ, বৈদ্যুতিন যানবাহন প্রভৃতি ক্ষেত্রকে চিহ্নিত করা হয়েছে। ২০১৮-২২ পর্যন্ত সাংস্কৃতিক বিনিময় কর্মসূচি কেন্দ্রীয় সংস্কৃতি সচিব রাঘবেন্দ্র সিং ভারতে নিযুক্ত সেদেশের রাষ্ট্রদূত শিন বঙ কিল সাংস্কৃতিক পর্যায়ে এবং মানুষের সঙ্গে মানুষের যোগাযোগ আরও নিবিড় করতে সঙ্গীত ও নৃত্য, রঙ্গমঞ্চ, শিল্প প্রদর্শনী, মহাফেজখানা, নৃ-তত্ব, সংগ্রহালয় প্রদর্শনী ও গণমাধ্যম কর্মসূচির ক্ষেত্রে প্রাতিষ্ঠানিক সহযোগিতার প্রসার ঘটানো। বিজ্ঞান ও শিল্পগবেষণা পর্ষদ (সিএসআইআর) এবং জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা পর্ষদের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সমঝোতাপত্র সিএসআইআর-এর মহানির্দেশক ডঃ গিরিশ সাহনি সেদেশের জাতীয় বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি গবেষণা পর্ষদের চেয়ারম্যান ডঃ উন ওয়াং ইউন বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির পাশাপাশি সুলভে জল শোধন প্রযুক্তি, দ্রুত পরিবহন ব্যবস্হা, নতুন বা বিকল্প সামগ্রী, পরম্পরাগত ওষুধপত্র প্রভৃতি ক্ষেত্রে সহযোগিতা গড়ে তোলা। রিসার্চ ডিজাইন ও স্ট্যান্ডার্ড অর্গানাইজেশন (আরডিএসও) এবং কোরিয়া রেলরোড রিসার্চ ইনস্টিটিউটের মধ্যে সহযোগিতার লক্ষে সমঝোতাপত্র সেদেশের প্রতিষ্ঠানটির সভাপতি না হি সিউং রেল সংক্রান্ত গবেষণা, রেল সম্পর্কিত অভিজ্ঞতা বিনিময় ও রেল শিল্প সংস্হাগুলির মানোন্নয়নের জন্য সহযোগিতা গড়ে তোলা। একই সঙ্গে ঐ দুই সংস্হা ভারতে রেল গবেষণা ও মানোন্নয়ন সংক্রান্ত একটি আধুনিক প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার পাশাপাশি যৌথ গবেষণা প্রকল্পগুলির পরিকল্পনা রচনা ও রূপায়ণের সম্ভাবনা খুঁজে বের করবে। জৈব প্রযুক্তি ও জৈব অর্থনীতির ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষে সমঝোতাপত্র বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিমন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধন সেদেশের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ইউ ইয়ং মিন স্বাস্হ্য, ওষুধপত্র, কৃষি-মৎস্য সামগ্রী, ডিজিটাল স্বাস্হ্য পরিচর্যা, মস্তিষ্ক গবেষণা ও পরবর্তী প্রজন্মের চিকিৎসা সাজ-সরঞ্জাম ক্ষেত্রে জৈব প্রযুক্তি ও জৈবিক তথ্যের আদান-প্রদানের জন্য সহযোগিতা গড়ে তোলা তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি সহ টেলি যোগাযোগ ক্ষেত্রে সহযোগিতার ক্ষেত্রে সমঝোতাপত্র টেলি যোগাযোগ প্রতিমন্ত্রী মনোজ সিনহা সেদেশের বিজ্ঞান ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রী ইউ ইয়ং মিন অত্যাধুনিক টেলি যোগাযোগ তথা তথ্য ও যোগযোগ প্রযুক্তি পরিষেবার মানোন্নয়ন, আধুনিকিকরণ ও সম্প্রসারণের পাশাপাশি বির্পযয় ব্যবস্হাপনা, আপৎকালীন পরিস্হিতি ও সাইবার নিরাপত্তার মতো ক্ষেত্রে ৫ জি, ক্লাউড কম্পিউটিং, বিগ ডেটা প্রভৃতি পরবর্তী প্রজন্মের যোগাযোগ নেটওয়ার্কগুলিকে কাজে লাগানোর লক্ষে সহযোগিতা গড়ে তোলা। ভারতের জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প নিগম ও সেদেশের ক্ষুদ্র তথা মাঝারি বাণিজ্য নিগমের মধ্যে অতিক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রে সহযোগিতার লক্ষে সমঝোতাপত্র জাতীয় ক্ষুদ্র শিল্প নিগমের চেয়ারম্যান তথা ম্যানেজিং ডাইরেক্টর শ্রী রবীন্দ্রনাথ সেদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি বাণিজ্য নিগমের সভাপতি লি স্যাং জিক উভয় দেশের অতি ক্ষুদ্র, ছোট ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ ক্ষেত্রের উন্নয়ন এবং বিশ্ব বাজারে আরও প্রতিযোগিতামূলক করে তোলার লক্ষ্যে সহযোগিতা স্হাপন। সেইসঙ্গে প্রযুক্তির বিনিময়কেন্দ্র স্হাপনের সম্ভাবনা খুঁজে বের করা। গুজরাট সরকার ও কোরিয়া বাণিজ্য প্রসার এজেন্সির মধ্যে সমঝোতাপত্র গুজরাট সরকারের শিল্প ও খনি বিষয়ক মুখ্য সচিব শ্রী এম. কে দাস সেদেশের হয়ে সাক্ষর করেন কোরিয়া বাণিজ্য বিনিয়োগ প্রসার এজেন্সির সভাপতি তথা সিইও ওন পিয়ং-ওহ্ শহরাঞ্চলীয় পরিকাঠামো, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, কৃষি সম্পর্কিত শিল্প, স্টার্টআপ শিল্প, দক্ষতা প্রশিক্ষণ ও উন্নয়ন এবং পুর্ননবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার মাধ্যমে দক্ষিণ কোরিয়ার শিল্প সংস্হা ও গুজরাট সরকারের মধ্যে শিল্প তথা বিনিয়োগ সম্পর্ক বৃদ্ধি করা। দক্ষিণ কোরিয়ার ঐ সস্হাটি আমেদাবাদে একটি সংস্হা চালু করবে এবং প্রগতিশীল গুজরাট বিশ্ব শীর্ষ সম্মেলন ২০১৯-এর অন্যতম প্রধান অংশীদার সংগঠন হবে। রানী সুরিরত্ন স্মৃতি প্রকল্প সম্পর্কিত সমঝোতাপত্র এই সমঝোতাপত্রে সাক্ষর করেন উত্তরপ্রদেশ সরকারের পর্যটন বিষয়ক অতিরিক্ত মুখ্যসচিব ও নির্দেশক অবনীশ কুমার অবস্হি এখনও বহু সংখ্যক কোরিয়ার মানুষ এই রানীর পূর্বসুরীদের সঙ্গে তাঁদের সম্পর্ক খুঁজে পান। এই স্মৃতিসৌধটি ভারত ও কোরিয়ার মধ্যে অভিন্ন সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও সুদীর্ঘ মৈত্রির সম্পর্কের প্রতি শ্রদ্ধা ও সম্মানের নির্দশন হয়ে উঠবে। আন্তর্জাতিক বিকাশ ও উন্নয়ন সংক্রান্ত কাজের দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বরাষ্ট্র সচিব নিযুক্ত হওয়ায় মিসেস প্যাটেলকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। ভারতের সঙ্গে মিসেস প্যাটেলের দীর্ঘদিনের সম্পর্ক এবং ভারত সফরের কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ভারতে তাঁর দপ্তরের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা ও কর্মসূচি সম্পর্কে মিসেস প্যাটেল অবহিত করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে। গুজরাটেরগান্ধীনগরে আগামী ১৪ সেপ্টেম্বর দ্বাদশ ভারত-জাপান বার্ষিক শীর্ষ বৈঠকে উপস্থিতথাকবেন ভারত ও জাপানের প্রধানমন্ত্রীদ্বয়। সংবাদমাধ্যমের কাছে বিবৃতিও দেবেনতাঁরা। ঐদিনই ভারত-জাপান বাণিজ্য বৈঠকও অনুষ্ঠিত হবে। প্রধানমন্ত্রীমোদী এবং প্রধানমন্ত্রী আবে-র মধ্যে এটি হবে চতুর্থ বার্ষিক শীর্ষ বৈঠক। আগামী ১৪সেপ্টেম্বর আমেদাবাদ ও মুম্বাইয়ের মধ্যে ভারতের প্রথম উচ্চপ্রযুক্তির রেল প্রকল্পেরসূচনা উপলক্ষে ঐদিন এক অনুষ্ঠানেও যোগ দেবেন দুই বিশ্ব নেতা। প্রকল্পটি রূপায়িতহলে ঐ দুটি শহরের মধ্যে রেলপথে যাতায়াতের সময় উল্লেখযোগ্যভাবে হ্রাস পাবে।উচ্চগতির রেল নেটওয়ার্ক গড়ে তোলার কাজে জাপান ইতিমধ্যেই এক পথিকৃৎ-এর ভূমিকা পালনকরেছে। শিংকানসেন বুলেট ট্রেন হল বিশ্বের দ্রুততম গতির এক রেল চলাচল ব্যবস্থা। ১৩ সেপ্টেমরজাপানের প্রধানমন্ত্রীকে নাগরিক সংবর্ধনাদানের জন্য আমেদাবাদ শহর এখন প্রস্তুত।বিভিন্ন সাংস্কৃতিক কর্মসূচির মধ্য দিয়ে ভারতের সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্যকে তুলে ধরাহবে ঐ বিশেষ অনুষ্ঠানটিতে। সাবরমতীনদীর তীরে মহাত্মা গান্ধী প্রতিষ্ঠিত সাবরমতী আশ্রম পরিদর্শনেও যাবেন দুইপ্রধানমন্ত্রী। পরে, আমেদাবাদে অবস্থিত ষোড়শ শতকের বিখ্যাত ‘সিরি সৈয়িদ নিজালি’মসজিদটিও পরিদর্শন করবেন তাঁরা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার (২রা অক্টোবর) নতুন দিল্লীতে মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্নতা সম্মেলনে ভাষন দেন। চারদিনের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক মন্ত্রীদের পাশাপাশি অন্যান্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দও যোগ দিয়েছেন। সম্মেলন মঞ্চ থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে একটি স্মারক ডাক টিকিট এবং গান্ধীর সবচেয়ে প্রিয় ভজন সংকীর্তন- ‘বৈষ্ণব জন তো’ ভিত্তিক একটি সিডির আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করেন। এই উপলক্ষে স্বচ্ছ ভারত পুরস্কারও প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষনে মহাত্মা গান্ধী পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ওপর যে গুরুত্ব দিয়েছিলেন, তার উল্লেখ করেন। ১৯৪৫-এ প্রকাশিত মহাত্মা গান্ধীর ‘গঠনমূলক কর্মসূচি’র কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই কর্মসূচিতে গ্রামীণ স্বচ্ছতার বিষয়টি সর্বাধিক গুরুত্ব পেয়েছিল। তিনি আরও বলেন, যদি নোংরা পরিবেশকে পরিস্কার-পরিচ্ছন্ন করা না হয়, তাহলে এমন পরিস্হিতির সৃষ্টি হয় যখন সকলেই ঐ পরিস্হিতির বাস্তবতাকেই মেনে নিতে বাধ্য হয়। কিন্তু, এর পরিবর্তে যখন একজন ব্যক্তি তার আশপাশের এলাকার নোংরা পরিস্কারের কাজ শুরু করেন, তখন অন্যরা এই ধরনের কাজে আরও উজ্জীবিত হন এবং যাবতীয় প্রতিকূল পরিস্হিতিকে জয় করে এ কাজে এগিয়ে যেতে থাকেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাত্মা গান্ধীর অনুপ্রেরণাতেই স্বচ্ছ ভারত অভিযান এগিয়ে চলেছে। মহাত্মা গান্ধীর আদর্শে অনুপ্রানিত হয়েই ভারতীয়রা স্বচ্ছ ভারত অভিযানকে বিশ্বের বৃহত্তম জন আন্দোলনে পরিণত করেছেন। তিনি আরও জানান, গ্রামীণ পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতার পরিধি ২০১৪-র ৩৮ শতাংশ থেকে বেড়ে এখন ৯৪ শতাংশে পৌঁছেছে। ৫ লক্ষের বেশি গ্রাম এখন উন্মুক্ত স্হানে শৌচকর্মমুক্ত হয়ে উঠেছে। স্বচ্ছ ভারত অভিযানের দরুন সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায় পরিবর্তনে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেন। এই অতিরিক্ত ভাতা চলতি বছরের প্রথম দিন অর্থাৎ০১.০১.২০১৭ থেকেই মূল্যবৃদ্ধির মোকাবিলায়। সপ্তম কেন্দ্রীয়বেতন কমিশনের সুপারিশ মতো স্বীকৃত সূত্র অনুসারে এই বৃদ্ধি হয়েছে। এর ফলে প্রতিবছর রাজকোষের ৫৮৫৭.২৮ কোটি টাকা ব্যয়বৃদ্ধি ঘটবে আর আগামী আর্থিক বছের এই ব্যয়বৃদ্ধিরপরিমান দাঁড়াবে ৬৮৩৩.৫০ কোটি টাকা। দেশবাসী যাতে বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্প ও কর্মসূচির সর্বোচ্চ সুফল ভোগ করতে পারেন তা নিশ্চিত করতে জীবনের বিভিন্ন ক্ষেত্রে রাজ্যপালরা কিভাবে তাঁদের অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে পারেন তাও এদিন সবিস্তারে ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যুবসমাজের মধ্যে যোগাভ্যাস বা যোগচর্চা সম্পর্কে সচেতনতা গড়ে তোলার একটি সুযোগ হিসাবে ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবসকে কাজে লাগানো যেতে পারে। অন্যদিকে, মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকী উদযাপনে দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিরও যে এক বিশেষ ভূমিকা রয়েছে, একথারও উল্লেখ করেন তিনি। জন-অংশীদারিত্বের মাধ্যমে এই গ্রামগুলি সাতটি বিভিন্ন সমস্যা থেকে মুক্ত হয়েছে। আগামী ১৫ই আগস্টকে লক্ষ্যমাত্রা চিহ্নিত করে আরও ৬৫ হাজার গ্রামকে নিয়ে আসা হচ্ছে ‘গ্রাম স্বরাজ অভিযান’-এর আওতায়। ৫০তম রাজ্যপাল সম্মেলন যাতে আগামী বছরের শুরুতেই অনুষ্ঠিত হয়, সেভাবে কর্মসূচি ছকে ফেলার পরামর্শ দেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বিকেলে এখানে আফগানিস্তানের চিফএকজিকিউটিভ ডঃ আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ-এর সঙ্গে এক সাক্ষাৎকার বৈঠকে মিলিত হন। সাক্ষাৎকারকালে দু’দিনের জন্য ভারত সফরে আসা ডঃ আবদুল্লাহ-কে তিনিআন্তরিকভাবে স্বাগত জানান। ভারত ও আফগানিস্তানের মধ্যে বহুধা প্রসারিত কৌশলগত অংশীদারিত্বেরসম্পর্কে যে আন্তরিকতা ও বলিষ্ঠতা রয়েছে তার ওপর বিশেষ জোর দেন দুই নেতাই। আফগানিস্তানে পরিকাঠামোর প্রসার এবং ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধির কাজে ভারতযেভাবে নিরন্তর সমর্থন ও সহযোগিতা যুগিয়ে যাচ্ছে, সেজন্য ডঃ আবদুল্লাহআফগানিস্তানের পক্ষ থেকে ভূয়সী প্রশংসা করেন ভারত সরকারের। এক শান্তিপূর্ণ, অভিন্ন, সমৃদ্ধ, অন্তর্ভুক্তিমূলক এবং গণতান্ত্রিকআফগানিস্তান রাষ্ট্র গড়ে তোলার লক্ষ্যে সকলরকম প্রচেষ্টাকে পূর্ণ সমর্থন যুগিয়েযেতে ভারত যে দৃঢ় অঙ্গীকারবদ্ধ, একথার পুনরুচ্চারণ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। আফগানিস্তান সহ সন্নিহিত এবং সংশ্লিষ্ট অঞ্চলের নিরাপত্তার বিষয়গুলিসম্পর্কেও মতবিনিময় করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী এবং ডঃ আবদুল্লাহ আবদুল্লাহ।নিরাপত্তার প্রশ্নে গভীর সমন্বয়সাধনের মধ্য দিয়ে একযোগে কাজ করে যাওয়ারপ্রতিশ্রুতি দেন তাঁরা। শ্রীলঙ্কায় ভয়াবহ বিস্ফোরণের নিন্দা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেছেন, “শ্রীলঙ্কায় এই বিস্ফোরণের নিন্দার কোন ভাষা নেই। এই অঞ্চলে এ ধরণের বর্বরোচিত ঘটনার কোন জায়গা নেই। শ্রীলঙ্কার মানুষের পাশে রয়েছে ভারত। রামেশ্বরমসেই ভূমি যা হাজার হাজার বছর ধরে দেশের আধ্যাত্মিক জীবনে একটি লাইট হাউসের মতো পথদেখিয়েছে। রামেশ্বরমেরএই পবিত্র ভূমিকে স্পর্শ করা আমার পক্ষে অত্যন্ত শ্লাঘার বিষয়। দেশের দ্বাদশজ্যোতির্লিঙ্গের একটি রয়েছে এই রামেশ্বরমে। ডঃ কালামের সকল কাজে ও ভাবনায় রামেশ্বরমের সহজত্ব,গভীরতা ও শান্ত চরিত্র পরিলক্ষিত হয়। ডঃ এ পি জেআব্দুল কালামের পুণ্যতিথিতে রামেশ্বরমে এসে আমি খুবই আবেগতাড়িত হয়ে পড়েছি। গত বছরআমি এখানে একটি সংকল্প গ্রহণ করেছিলাম, আপনাদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম যে, কালামসাহেবের স্মৃতিতে রামেশ্বরমে একটি স্মৃতিসৌধ নির্মাণ করা হবে। আমি অত্যন্ত আনন্দিতযে আজ সেই সংকল্প বাস্তবায়িত হচ্ছে। ডিফেন্সরিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট অর্গানাইজেশন (ডিআরডিও) অত্যন্ত কম সময়ের মধ্যে এইসুন্দর স্মৃতিসৌধটি গড়ে তুলেছে। এই স্মৃতিসৌধ দেশের বর্তমান ও ভবিষ্যৎ প্রজন্মকেসবসময় প্রেরণা যোগাবে। কিন্তু দিল্লিতে আজ এমন সরকারআপনারা গড়ে তুলেছেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকারকে আপনারা যে দায়িত্ব দিয়েছেন; তাঁরাএসে কর্মসংস্কৃতি আমূল বদলে দিয়েছে। আর এখন দেশের সর্বত্র নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যেপ্রতিটি কাজ সম্পন্ন করার ক্ষেত্রে সাফল্য পাচ্ছে। একথা ভুললেচলবে না যে, শুধু সরকার, অর্থ, পরিকল্পনা, শক্তি সবকিছু থাকলেও সমস্ত কাজে সাফল্যআসে না। তারপর ঘন্টাখানেক বিশ্রাম নিয়ে,চা-জলখাবার খেয়ে তাঁরা আবার রাত ৮টা পর্যন্ত অতিরিক্ত কাজ করতেন। তাঁরা কেউ এইদৈনিক দু’ঘন্টা করে অতিরিক্ত শ্রমের টাকা নেননি। যে দরিদ্রশ্রমিক ভাই-বোনেরা এত ভক্তিভাব নিয়ে এই পবিত্র কার্য সম্পন্ন করেছেন, তাঁদেরকে আমিশত শত প্রণাম জানাই। এই শ্রমিক ও কারিগররা এই উৎকৃষ্টমানের কাজ করেছেন যে, এখানেউপস্থিত সকলকে আমি উঠে দাঁড়িয়ে করতালির মাধ্যমে তাঁদেরকে অভিনন্দন জানানোর অনুরোধজানাই। যখন একজনশ্রমিক দেশভক্তিতে আপ্লুত হয়ে কোনও কাজ করেন, সেই কাজ কত মহৎ হয়ে উঠতে পারে, তারউৎকৃষ্ট প্রমাণ রামেশ্বরমে গড়ে ওঠা আব্দুল কালামের এই স্মৃতিসৌধ। আজ আমরা আম্মার অনুপস্থিতি অনুভব করছি। কিন্তু আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আম্মারআত্মা যেখানেই থাকুক না কেন, তামিলনাডুর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের স্বার্থে করা যে কোনওকাজে তাঁর আশীর্বাদ অব্যাহত থাকবে। আমি আজরামেশ্বরমের এই পুণ্যভূমি থেকে দেশবাসীর জন্য একটি প্রার্থনা করতে চাই। ভারতেরপ্রত্যেক প্রান্ত থেকে পুণ্যার্থী ও পর্যটকরা রামেশ্বরম দর্শনে আসেন। পর্যটকব্যবস্থাপকদের প্রতি আমার অনুরোধ, রামেশ্বরম ভ্রমণার্থীদের প্রতি আমার অনুরোধ, এখনথেকে যখনই রামেশ্বরম আসবেন, আপনাদের দর্শন তালিকাতে শ্রদ্ধেয় আব্দুল কালামের এইস্মৃতিসৌধটিকে যুক্ত করে নেবেন। এতে দেশের নবীন প্রজন্ম প্রেরণা পাবেন, আপনারাঅবশ্যই এসে এই প্রেরণাতীর্থটি দেখবেন। আজ আমাদের মৎস্য শিকারীরা ছোট ছোট নৌকা নিয়েসমুদ্রে যান। এর মাধ্যমে মৎস্যজীবী ভাই-বোনেরাঋণ পাবেন, অনুদান পাবেন, ভর্তুকি পাবেন। তাঁরা এখন গভীর সমুদ্রে যাবার উপযোগী বড়আকারের ভালো ট্রলার পেয়েছেন। সেজন্য আজ কয়েকজন নির্বাচিত ব্যক্তির হাতে চেক তুলেদেওয়ার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। রামেশ্বরমেরসঙ্গে প্রভু রামচন্দ্রের নাম জড়িয়ে আছে। আজ এই রামেশ্বরম থেকে প্রভু রামচন্দ্রেরজন্মভূমি অযোধ্যার একটি শ্রদ্ধা-সেতুবন্ধন হচ্ছে; ভারতীয় রেলের উদ্যোগে ‘রামেশ্বরমথেকে অযোধ্যা’-একটি ট্রেন চালু করার সৌভাগ্য আমার হয়েছে। সেজন্য আমি সংশ্লিষ্ট সকল সংগঠনকে বিশেশ করে,বিবেকানন্দ কেন্দ্রকে হৃদয় থেকে ধন্যবাদ জানাই। ভারতেরতিনদিকে বিশাল সমুদ্র আর সাড়ে সাত হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ সমুদ্রতটে অনেক বিনিয়োগএবং কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা রয়েছে। একথা মাথায় রেখে কেন্দ্রীয় সরকার সাগরমালাপ্রকল্প চালু করেছে। তারা অন্যদের রোজগারেরব্যবস্থা করতে চায়। নবীন প্রজন্মের এই স্বপ্ন পূরণের উদ্দেশ্যে কেন্দ্রীয় সরকার‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়ার’র মতো প্রকল্প চালু করেছে। নবীনপ্রজন্মের দক্ষতা উন্নয়নের স্বার্থে দেশের প্রতিটি জেলায় প্রশিক্ষণ কেন্দ্র চালুকরা হচ্ছে। নিজস্ব উদ্যোগ গড়ে তুলতে নবীন প্রজন্মকে আর্থিক সহায়তার জন্য কেন্দ্রীয়সরকার মুদ্রা যোজনা প্রকল্প চালু করে কোনও রকম গ্যারান্টি ছাড়াই ব্যাঙ্ক ঋণেরব্যবস্থা করেছে। আমি অত্যন্ত আনন্দিত যে, ঐ ৮ কোটির মধ্যে ১ কোটিরও বেশিমানুষ এই তামিলনাডুর সন্তান। এই পরিসংখ্যান বলে যে, কর্মসংস্থানের প্রতি, নিজস্বউদ্যোগে কারখানা বা ব্যবসা গড়ে তুলতে তামিলনাডুর নবীন প্রজন্মের মানুষদের উৎসাহ ওউদ্দীপনা কতটা! কেন্দ্রীয়সরকার রাজ্যগুলির পরিকাঠামো উন্নয়নেও জোর দিয়েছে। নতুন ভারত গড়ে না উঠলে নতুনতামিলনাডু-ও গড়ে ওঠা অসম্ভব। আর সেজন্য কেন্দ্রীয় সরকার প্রাথমিকভাবে দেশেরসার্বিক পরিকাঠামো উন্নয়নে জোর দিয়েছে। এই শহরগুলিরজন্য কেন্দ্রীয় সরকার ইতিমধ্যেই ৯০০ কোটিরও বেশি, প্রায় ১ হাজার কোটি টাকাইতিমধ্যেই বরাদ্দ করেছে। অম্রুত মিশনেও তামিলনাডুর৩৩টি শহরকে বেছে নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় সরকার এক্ষেত্রে তামিলনাডুর জন্য ৪ হাজার৭০০ কোটি টাকারও বেশি দেওয়ার কথা মেনে নিয়েছে। এই টাকা দিয়ে এই ৩৩টি শহরে বিদ্যুৎ,পানীয় জল, নিকাশী ব্যবস্থা, পরিচ্ছন্নতা এবং উদ্যান সৃষ্টির জন্য কাজ করা হবে। কেন্দ্রীয় সরকার প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা খরচ করে চেন্নাইমেট্রোরেল প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের সম্প্রসারণ মঞ্জুর করেছে। বিভিন্ন স্বনির্ভরগোষ্ঠীগুলিকে উৎসাহ দিতে, গ্রামের যুবক-যুবতীদের দক্ষতা নির্মাণে সাহায্যেরপ্রতিকূল করে তুলতে তামিলনাডুর গ্রামীণ সড়ক উন্নয়নে গত তিন বছরে প্রায় ১৮ হাজারকোটি টাকা কেন্দ্রীয় সরকার তামিলনাডু’কে দিয়েছে। আশা করি, তামিলনাডুও অন্যকোনও রাজ্য থেকে পিছিয়ে থাকবে না। আমি রাজ্য সরকারকে অনুরোধজানাব, আপনারা প্রস্তাব পাঠান, প্রক্রিয়াকে দ্রুত করুন আর টাকা পেয়ে নির্মাণেরকাজে ঝাঁপিয়ে পড়ুন। ডঃ আব্দুল কালাম আজীবন একউন্নত ভারতের স্বপ্ন সফল করার চেষ্টা করে গেছেন। তিনি সর্বদাই ১২৫ কোটি দেশবাসীকেএই লক্ষ্য পূরণের জন্য প্রেরণা যোগাতেন। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেকধন্যবাদ। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল উত্তরপ্রদেশ বিনিয়োগকারী সম্মেলন, ২০১৮-র উদ্বোধনকরবেন। সম্ভাবনা রয়েছে, সম্মেলনচলাকালীন বেশ কয়েকটি মউ স্বাক্ষরেরও। ভারত ও ইজরায়েলের প্রধানমন্ত্রীদ্বয় আজ গুজরাটের সবরকান্তা জেলার ভাদ্রাদ-এশাকসব্জির উৎকর্ষ কেন্দ্রটি পরিদর্শন করেন। জেলার কৃষিজীবীদের সঙ্গে একআলাপচারিতায় মিলিত হন তাঁরা। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে বলেন যে, কৃষি ব্যবস্থাকে অক্ষুণ্নরেখে কিভাবে একটি জাতির রূপান্তর সম্ভব, তা সম্ভব করে দেখিয়েছে ইজরায়েল। কৃষিক্ষেত্রে প্রযুক্তি ব্যবহারের গুরুত্বের বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী২০২২ সালের মধ্যে কৃষকদের আয় ও উপার্জন দ্বিগুণ করে তোলার লক্ষ্যে তাঁর সরকারেরবিশেষ প্রচেষ্টার কথাও এদিন বর্ণনা করেন তিনি। নয়াদিল্লি, ১৭ মার্চ, ২০১৫ আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল (আই.এম.এফ.) – এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রীমতী ক্রিস্টিন ল্যাগার্ড প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলেন। অর্থনৈতিক পুনর্বিকাশের জন্য দায়বদ্ধভাবে কাজ করার জন্য সরকারের প্রশংসা করেন শ্রীমতী লাগার্ড। তিনি বলেন, এর পরিণাম সকলে দেখতে পাচ্ছে এবং বিকাশের হার ৭.৫ শতাংশ ছাড়িয়ে গেছে যার জন্য বিশ্ব অর্থনীতি আরও চাঙ্গা হয়েছে। তিনি যে ভারত বিকাশের পথে চলতে থাকবে বলে আশা প্রকাশ করেন। “ আমার বন্ধুপ্রতিম প্রেসিডেন্ট হাসানরৌহানি পুনর্নিবাচিত হওয়ায় তাঁকে আন্তরিক অভিনন্দন জানাই। প্রেসিডেন্ট হাসানরৌহানির সচল ও গতিশীল নেতৃত্বে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত হওয়ার লক্ষ্যে ইরানেরপ্রচেষ্টা অব্যাহত থাকবে। প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক শ্রী জগদীশ ঠক্করের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের জনসংযোগ আধিকারিক শ্রী জগদীশ ঠক্করের প্রয়াণে আমি অত্যন্ত দুঃখিত। প্রবীণ সাংবাদিক জগদীশভাইয়ের সঙ্গে গুজরাট ও দিল্লিতে আমি বেশ কয়েক বছর কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। তাঁর সরলতা এবং উষ্ণ আতিথেয়তার জন্য শ্রী ঠক্কর বহুল পরিচিত ছিলেন। বহু বছর ধরে অসংখ্য সাংবাদিক নিয়মিতভাবে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেন। তিনি গুজরাটের একাধিক মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গেও কাজ করেছেন। আমরা এমন একজন অসাধারণ ব্যক্তিকে হারালাম যিনি তাঁর কাজকে অসম্ভব ভালোবাসতেন এবং নিষ্ঠার সঙ্গে সমস্ত কাজকর্ম করতেন। প্রধানমন্ত্রীরসঙ্গে সচিবদের এই আলোচনা ও মতবিনিময়কালে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দপ্তরের কেন্দ্রীয়মন্ত্রী এবং নিতি আয়োগের পদস্থ আধিকারিকরা। বিশাখাপত্তনম জেলার সাব্বাভরম মণ্ডলে এই প্রতিষ্ঠানটিগড়ে তোলা হবে। ডিডি ফ্রি ডিশের মাধ্যমে প্রথমবার রাজ্য ভিত্তিক দূরদর্শনের চ্যানেলপ্রাপ্তির জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জনগণকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেন, “ডিডি ফ্রি ডিশের মাধ্যমে প্রসার ভারতীর আরও ১১টি রাজ্য ভিত্তিক স্যাটেলাইট চ্যানেল দর্শকদের কাছে পৌঁছে দেওয়ার খবর জেনে আমি আনন্দিত। এরমধ্যে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের ৫টি চ্যানেলও রয়েছে। এরফলে আঞ্চলিক সংস্কৃতি জোরদার হবে এবং মানুষের দীর্ঘদিনের চাহিদা পূরণ হবে। বার্ষিক শিখর সম্মেলনে যোগ দিতে আমি ২০১৮ সালের ২৮ -২৯ অক্টোবর জাপান সফর করবো। ২০১৪ সালে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমার প্রথম জাপান সফরের পর থেকে জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে’র সঙ্গে এটা হবে আমার দ্বাদশ সাক্ষাৎকার। বার্ষিক শিখর সম্মেলনে যোগ দিতে আমি ২০১৬ সালেও জাপান সফর করেছি। আমার নিজের শহর গুজরাটে গত বছর প্রধানমন্ত্রী আবে ও শ্রীমতী আকেই আবেকে অভ্যর্থনা জানানোর সৌভাগ্য আমার হয়েছিলো। জাপান , ভারতের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। আমাদের মধ্যে বিশেষ কৌশলগত ও আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব রয়েছে। জাপানের সংগে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত উভয় ক্ষেত্রে আমাদের সম্পর্ক সাম্প্রতিক সময়ে সম্পূর্ণ পৃথক মাত্রা পেয়েছে। বর্তমানে এই অংশীদারিত্ব বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের পূবে তাকাও নীতির এবং ভারত –প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলের উন্নতির বিষয়ে আমাদের মুক্ত দৃষ্টিভংগীর ওপর ভিত্তি করে দৃঢ় এই সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। আমরা, আমাদের নীতি ও চিন্তাধারা বিনিময় করি। আমরা সকলের জন্য শান্তি ও সম্প্রীতি কামনা করি। আমাদের পরিপুরক মনোভাব ভারত –জাপান সম্পর্ককে সফলতা দিয়েছে। জাপান বর্তমানে ভারতের অর্থনৈতিক ও কারিগরী ক্ষেত্রে আধুনিকীকরনের অন্যতম বিশ্বস্ত অংশীদার ও ভারতে বিনিয়োগকারী দেশগুলির মধ্যে অন্যতম। মুম্বাই-আহমেদাবাদ এর মধ্যে উচ্চ গতির ট্রেন ও ফ্রেট করিডরের মত প্রকল্পগুলি আমাদের মজবুত অর্থনৈতিক সহযোগিতার প্রতিচ্ছবি। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘স্কিল ইন্ডিয়া’, ‘ডিজিটাল ইন্ডিয়া’ ও ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়ার মত জাতীয় কর্মসূচীগুলি রূপায়নের ক্ষেত্রেও জাপান ভারতের সহযোগী দেশ হয়ে এগিয়ে এসেছে। ভারতের ভবিষ্যৎ অর্থনীতিতে জাপানের বিনিয়োগকারীদের আস্থা রয়েছে। গবেষণা ও কারিগরী ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক স্তরে জাপানের নেতৃত্ব দেবার ক্ষমতাকে আমরা যথাযথ মূল্য দেই। এই সফরকালে আমার, রোবোট তৈরীতে জাপানের উচ্চ কারিগরী ক্ষমতা প্রত্যক্ষ করার সুযোগ হবে। সে দেশে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের সামনে আমি ভাষণ দেব। এই আলাপচারিতা আমাদের বানিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত অংশীদারিত্ব আরও মজবুত করবে এবং স্বাস্থ্যপরিষেবা, ডিজিটাল প্রযুক্তি, কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ বিপর্যয় মোকাবিলা পরিকাঠামোর উন্নয়ন সহ বিভিন্ন নতুন ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি করবে। আমাদের সাংসদদের সঙ্গে সহযোগিতা ও আমাদের রাজ্যগুলি ও জাপানের বিভিন্ন দপ্তরের মধ্যে সম্পর্ককে আমি স্বাগত জানাই। এটা অত্যন্ত আনন্দের যে শিক্ষা, দক্ষতা উন্নয়ন, সংস্কৃতি ও পর্যটন ক্ষেত্রে আদান প্রদানের মধ্যে দিয়ে দু’দেশের মানুষে মানুষে সম্পর্ক আরও বৃদ্ধি পাচ্ছে। . প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (৭ই সেপ্টেম্বর) নতুন দিল্লীতে বিশ্বের বিভিন্ন গাড়ি প্রস্তুতকারক কোম্পানির প্রধানদের সঙ্গে কথা বলেন। প্রসঙ্গত টয়োটা, সাংঘাই-এর এসএআইসি মোটর কর্পোরেশন, বশ, এবিবি লিমিটেড, হুয়ান্ডাই মোটর কোম্পানি, ফোর্ড স্মার্ট মোবিলিটি এলএলসি এবং উবর এভিয়েশনের শীর্ষ স্থানীয় প্রতিনিধিরা প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী রবিবার (২৭ মে) জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লিতে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে নব-নির্মিত দুটি এক্সপ্রেসওয়ে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। এর একটি নিজামউদ্দিন ব্রিজ থেকে দিল্লি-উত্তর প্রদেশ সীমান্ত পর্যন্ত বিস্তৃত ১৪ লেন বিশিষ্ট মহাসড়কের প্রথম পর্যায়। দিল্লি-মিরাট এক্সপ্রেসওয়ের উদ্বোধনের পর, মহাসড়কটি পরিদর্শনের জন্য প্রধানমন্ত্রী যখন খোলা জিপ-এ করে কয়েক কিলোমিটার সফরে যান, সাধারণ মানুষ তখন তাঁকে শুভেচ্ছা ও মহাসড়কের জন্য অভিনন্দন জানান। এই উপলক্ষে, বাগপত-এ এক জনসমাবেশে প্রধানমন্ত্রী দৃঢ়প্রত্যয় ব্যক্ত করেন যে, সমগ্রি দিল্লি-মিরাট এক্সপ্রেসওয়ের কাজ শীঘ্রই সম্পূর্ণ হবে। তিনি বলেন, ইস্টার্ন পেরিফেরাল এক্সপ্রেসওয়ের ফলে দিল্লিতে যানজট সমস্যা কমবে। সাধারণ মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নে আধুনিক পরিকাঠামোর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি সড়ক, রেলপথ, জলপথ প্রভৃতি ক্ষেত্রে পরিকাঠামো নির্মাণে যে সমস্ত পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে, তার কথা উল্লেখ করেন। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে অগ্রগতির কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দেন। মুদ্রা যোজনার মাধ্যমে এখনও পর্যন্ত প্রদেয় ১৩ কোটি টাকা ঋণ সহায়তার মধ্যে ৭৫ শতাংশই মহিলা শিল্পোদ্যোগীদের দেওয়া হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। তপশিলি জাতি ও অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর মানুষের কল্যাণে গৃহীত পদক্ষেপগুলির কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার নেপালের প্রধানমন্ত্রী মিঃ শের বাহাদুর দেউবা’র সঙ্গে এক দূরভাষ বার্তায় সাম্প্রতিক বন্যায় নেপালে প্রাণহানির সংবাদে গভীর দুঃখ ও সমবেদনা প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভারত ও ভুটানের মধ্যে ব্যবসা,বাণিজ্য ও ট্রানজিট নিয়ে একটি চুক্তির অনুমোদন দিল| এই বিশেষ প্রতিষ্ঠানটির ৭০তম বার্ষিকীতে এখানে আসতে পেরে আমি নিজেকে ভাগ্যবান বলে মনে করছি। বহু দশক ধরে বর্তমান বিশ্বে বহু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হয়ে এবং বহু অগ্রগতির সাক্ষ্য বহন করে এই প্রতিষ্ঠানটি নানাভাবে সমৃদ্ধ হয়ে আজও নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে। অনেক বিষয়েই মানুষের দ্বিধা ও সংশয় থাকতে পারে। তা দূর করাও বিশেষভাবে জরুরি। রাষ্ট্রসঙ্ঘের সূচনাকাল থেকেই বহু জাতি এখানে মিলিত হয়েছে এবং পরবর্তীকালে আরও তিনগুণ বেশি দেশ রাষ্ট্রসঙ্ঘে যোগদান করেছে। তাই, আমাদের দৃঢ় বিশ্বাস, রাষ্ট্রসঙ্ঘের জন্যই আমাদের বিশ্ব আজও বর্তমান এবং নিঃসন্দেহে অস্তিত্ব রক্ষার ক্ষেত্রে একটি সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম। এই বিশ্বাসই রাষ্ট্রসঙ্ঘের মতো একটি প্রতিষ্ঠানের আওতায় আরও বহু সংস্থার জন্ম দিয়েছে, যা মানুষের চ্যালেঞ্জের বিভিন্ন দিক নিয়ে নিয়ত চিন্তাভাবনা করে। এই বিশেষ প্রতিষ্ঠানটি ছাড়া আর কোনও সংস্থাই এর থেকে বেশি করে আমাদের স্বার্থ দেখভাল করতে পারে না। এই সমস্ত শক্তির মূলে রয়েছে প্রকৃতির মূল ব্যঞ্জনা, বিবিধের মাঝেও ঐক্য ও সম্প্রীতির সমন্বয়। আর এই কারণেই, রাষ্ট্রসঙ্ঘের প্রথম লক্ষ্যই ছিল ইউনেস্কোর মতো একটি সংস্থা গঠন করা। ইউনেস্কোর কাজকর্মকে ভারত গভীরভাবে সম্মান জানিয়ে এসেছে এবং আমাদের পারস্পরিক অংশীদারিত্বকে আরও নিবিড় করে তুলতে চেয়েছে। ইউনেস্কোর সূচনাকাল থেকেই আমাদের সম্পর্কের অসামান্য গৌরবকে আমরা লালন করেছি। বিশ্বে স্থায়ী শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে শিক্ষার আশু প্রয়োজনীয়তার কথা উপলব্ধি করে ইউনেস্কো’কে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছিলেন মহাত্মা গান্ধী। আমাদের প্রথম রাষ্ট্রপতি ডঃ রাধাকৃষ্ণণ এই প্রতিষ্ঠানটির সূচনার বছরগুলিতে এক অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছিলেন। ভারতে শিক্ষা ও বিজ্ঞানের প্রসারে এবং আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের সংরক্ষণে ইউনেস্কোর ভূমিকার জন্য আমরা বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ। একইভাবে সারা বিশ্বে এই লক্ষ্যকে বাস্তবে রূপ দিতে ইউনেস্কোর পাশে এসে দাঁড়ানোর সুযোগ আমাদের হয়েছে। ভারত যে সমস্ত সমস্যার মোকাবিলা করে এবং যে উন্নয়নের স্বপ্ন দেখে তা সমস্তই ইউনেস্কোর আদর্শকে অনুসরণ করে। এক সুপ্রাচীন ভূমিতে আমরা গড়ে তুলেছি এক আধুনিক রাষ্ট্র। আমাদের রয়েছে, সময়াতীত কালের উদার সহাবস্থানের এক ঐতিহ্য এবং আমাদের সমাজ গড়ে উঠেছে বহু বৈচিত্র্যের মধ্য দিয়ে। আর তা হয়ে উঠবে নানা দিক থেকেই অর্থবহ। প্রত্যেক নাগরিকের অধিকার ও স্বাধীনতাকে আমরা একদিকে যেমন রক্ষা করব অন্যদিকে তেমনই তা সুরক্ষিত রাখতেও আমাদের কর্মপ্রচেষ্টাকে নিয়োজিত করব। আমাদের ঐতিহ্যে শিক্ষা বরাবরই এক বিশেষ স্থান অধিকার করে এসেছে। আর, আমাদের এই পরিবর্তন শুরু করতে হবে শিশুকন্যাদের দিয়ে। ভারতের শিশুকন্যাদের জন্য শিক্ষা ও সুযোগসুবিধার সম্প্রসারণ আমার সবচেয়ে প্রিয় কাজ। তারা যাতে নিরাপত্তা ও মর্যাদার সঙ্গে স্কুলে যেতে পারে তা আমরা নিশ্চিত করব। বর্তমান যুগের সবচেয়ে চাঞ্চল্যকর পরিবর্তনের ঘটনা হল এটাই। দেশের ৬ লক্ষ গ্রামকে যুক্ত করতে আমরা ইতিমধ্যেই শুরু করেছি এক ডিজিটাল সাক্ষরতা মিশন। মনে রাখতে হবে, মানুষের বাসযোগ্য ভূমি ও তার অন্তর্নিহিত সম্ভাবনার মধ্যে একটি গভীর ও দৃঢ় সংযোগ রক্ষা করা প্রয়োজন। বর্তমান বিশ্বে যে সমস্ত চ্যালেঞ্জের আমরা সম্মুখীন, তার মধ্যে এই প্রতিষ্ঠানটির গুরুত্ব কতখানি তাও আমরা উপলব্ধি করতে পারছি। বিভিন্ন দেশের সীমানার গন্ডী পেড়িয়ে বিভিন্ন শহর ও সমাজের মধ্যে মানুষের যোগাযোগ বেড়ে চলেছে। আর এর সঙ্গে শুরু হয়েছে রাষ্ট্রের আধিপত্যের পরিবর্তে বিভিন্ন গোষ্ঠীর ধ্বংসাত্মক কাজকর্ম। তাই, আমাদের আজকের আন্দোলন, শুধুমাত্র আমাদের ইপ্সিত লক্ষ্যের জন্যই নয় বরং নিজেদের প্রতিষ্ঠা করার তাগিদেও। শুধু তাই নয়, এই সংস্কৃতিকে কেন্দ্র করেই বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে ঘটে চলেছে দ্বিধা-দ্বন্দ্ব ও সংঘাত। মনে রাখতে হবে, মাউস ক্লিক করলেই যোগাযোগের দুনিয়ায় আমরা এখন প্রবেশ করতে পারি। তাই, আমরা এখন বাস করছি এক তথ্যের যুগে। আমরা জানি যে, সব কিছু জানলেই সৌভ্রাতৃত্বের প্রসার ঘটে না বা অন্ধ বিশ্বাস ও সংস্কারের অবসান ঘটে না। যখন ইবোলা একটি সমগ্র অঞ্চলকে গ্রাস করে, আকস্মিক ঘূর্ণিঝড় বহু জীবন ও শস্যহানি ঘটায় এবং ভয়ঙ্কর রোগব্যাধি আমাদের সমস্ত প্রচেষ্টাকে বিফল করে দেয়, তখনই আমরা অনুভব করি, আমরা এখনও কত অসহায়। আজকের দিনে আমরা যখন দেখি বহু মানুষের জীবন বিপন্ন, শিক্ষা ক্ষেত্রে শিশুরা অন্যায় ও অবিচারের শিকার এবং পর্যাপ্ত মানবসম্পদের অভাবে বহু দেশের অগ্রগতির সম্ভাবনা ক্ষীণ তখনই আমরা উপলব্ধি করি যে, আমাদের এখনও অনেক কিছু করার বাকি। কিন্তু আমরা জানি, গত সাত দশক ধরে পৃথিবীর অগ্রগতি ঘটেছে অবিশ্বাস্যভাবে। আমাদের এই প্রগতি নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে আমাদের মধ্যে উৎসাহ ও অনুপ্রেরণা সঞ্চার করে। আর এই সমস্ত কাজে ইউনেস্কো এক বিশেষ ভূমিকা পালন করতে পারে। কারণ, সংস্কৃতি সমগ্র পৃথিবীকে খন্ডে খন্ডে বিভক্ত করে না বরং একত্রিত করে, ঐক্যবদ্ধ করে। তা হয়ে উঠতে পারে বিভিন্ন জাতির মধ্যে পারস্পরিক শ্রদ্ধা ও বোঝাপড়ার বাতাবরণ গড়ে তোলার সর্বশ্রেষ্ঠ মাধ্যম। এই আবহে বিভিন্ন জাতি শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে ঐক্যবদ্ধ হতে পারে। ভারত তার প্রতিবেশী দেশগুলির মধ্যে, এশিয়া ও ভারত মহাসাগরের বিভিন্ন অঞ্চলের মধ্যে ঘনিষ্ঠ সাংস্কৃতিক সংযোগ স্থাপন করে চলেছে, যাতে বিভিন্ন দেশের মধ্যে মৈত্রীর মেলবন্ধন ঘটানো যায়। সমগ্র পৃথিবী জুড়ে সন্ত্রাসবাদ, হিংসা এবং বিচ্ছিন্নতার যে শক্তি মাথাচাড়া দিয়ে উঠছে তাকে সর্বশক্তি দিয়ে প্রতিহত করতে আমাদের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও বিশ্বাসকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে। জ্ঞানের ঐতিহ্যের যে সম্পদ আমাদের সংস্কৃতির মধ্যে রয়েছে তাকেও আমাদের লালন করতে হবে। যুগ যুগ ধরে জ্ঞান ও প্রজ্ঞার মধ্য দিয়ে গড়ে উঠেছে বিশ্ব সমাজ। আর তার মধ্যে নিহিত রয়েছে অর্থনৈতিক ও পরিবেশ-বান্ধব এক সুদক্ষ সমাধানসূত্র। কিন্তু বর্তমান বিশ্বে এই জ্ঞান ও প্রজ্ঞার বাতাবরণ আজ বিশেষভাবে বিপন্ন। তাই, ঐতিহ্যবাহী জ্ঞানসম্পদের পুনরুদ্ধার ও সংরক্ষণে আমাদের আরও বেশি করে যত্নবান হতে হবে। বিশ্বের কয়েকটি বিভিন্ন অংশে স্বাস্থ্য ও খাদ্য নিরাপত্তা সহ মানব-কল্যাণের বিভিন্ন দিকে অগ্রসর হতে বিজ্ঞানকে আমাদের হাতিয়ার করে তুলতে হবে। জলবায়ু পরিবর্তন সমগ্র বিশ্বের কাছেই এক ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জ। তার মোকাবিলায় প্রয়োজন সম্মিলিত প্রচেষ্টা ও সমস্যার যথাযথ অনুধাবন। সুপ্রাচীনকাল থেকেই বিশ্বাস ও প্রকৃতির মধ্যে এক গভীর সংযোগ রয়েছে বলে আমরা মনে করি। আমরা বিশ্বাস করি, সমৃদ্ধির একমাত্র পথ হল – তাকে সতত নিরন্তর রাখা। আমাদের সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্বাভাবিক অনুশীলনের মধ্য দিয়েই আমরা এই বিষয়টিকে বেছে নিয়েছি। শুধু তাই নয়, ভবিষ্যতের প্রতি এক অঙ্গীকারও আমাদের এই কাজে অনুপ্রাণিত করে। আগামী সাত বছরে দেশে ১৭৫০০০ মেগাওয়াট দূষণমুক্ত ও পুনর্ব্যবহারযোগ্য শক্তি উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা আমরা স্থির করেছি। অনেক সময়েই দূষণের মাত্রা কিভাবে হ্রাস করা যায়, তা নিয়ে আমাদের মধ্যে অনেক তর্ক-বিতর্ক হয়েছে। কিন্তু, শুধুমাত্র কোনও কাজকে বেছে নিলেই হবে না, যে কোনও গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করার কাজেও আমাদের সফল হতে হবে। এই একই কারণে, মানুষের জীবনশৈলীতে পরিবর্তন আনারও আমি পক্ষপাতী। আমরা কিভাবে জীবন ধারণ করবো, তার ওপরেই নির্ভর করবে দূষণের মাত্রা হ্রাস করার কাজে আমরা কতটা সফল হতে পারবো। আর এভাবেই মানব-কল্যাণে আমরা এক নতুন পথ খুঁজে পাওয়ার কাজে সফল হবো। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই গত সেপ্টেম্বর মাসে রাষ্ট্রসঙ্ঘের সাধারণ পরিষদে ২১ জুন তারিখটিকে আন্তর্জাতিক যোগ দিবস হিসেবে ঘোষণা করার জন্য আমি আহ্বান জানিয়েছিলাম। কারণ যোগ ব্যায়াম একজন ব্যক্তি মানুষকে তার নিজের সঙ্গে যেমন একাত্ম হতে সাহায্য করে অন্যদিকে তেমনই, সমাজ ও প্রকৃতির মধ্যেও একাত্মতা ও সম্প্রীতির সমন্বয় গড়ে তোলে। আমাদের জীবনশৈলীতে পরিবর্তন এবং চেতনার উন্মেষ ঘটিয়ে যোগ জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলার সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব ভারসাম্য রক্ষার কাজেও সহায়ক হয়ে উঠতে পারে। গঙ্গার দূষণমুক্তির যে লক্ষ্য আমরা গ্রহণ করেছি, তা যেমন একদিকে সংস্কৃতি, বিজ্ঞান, জ্ঞানের ঐতিহ্য, শিক্ষা অর্থনীতি তথা পরিবেশের মধ্যে সঙ্গতি ঘটায়, একই সঙ্গে জীবনশৈলী সম্পর্কে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গীর মধ্যেও পরিবর্তন নিয়ে আসে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ প্রতিষ্ঠানটির মূল অন্তর্নিহিত শক্তির মধ্যে রয়েছে মানুষের মনে শান্তি ও নিরাপত্তা গড়ে তোলার আশ্বাস। এই প্রতিষ্ঠানটি আজ পর্যন্ত যে সমস্ত উল্লেখযোগ্য কাজ করে এসেছে আজ তার ৭০তম বার্ষিকীর শুভক্ষণে আমরা তা স্মরণ করি। বহু সময় ও অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে আমরা যে জ্ঞান আহরণ করেছি তাকে সঙ্গে নিয়ে ভবিষ্যতের পথে এগিয়ে যাওয়ার এটি হল আমাদের কাছে বিশেষ একটি মুহূর্ত। তামিলনাড়ুর প্রবল বর্ষণে উদ্ভুত বন্যা পরিস্থিতির কারণে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন তাঁদের নিকট আত্মীয়-পরিজনকে প্রধানমন্ত্রীর জাতীয় ত্রাণ তহবিল থেকে ২ লক্ষ টাকা করে দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। পরে, প্রধানমন্ত্রী আয়ারল্যান্ডে বসবাসকারী বিভিন্ন ভারতীয় সম্প্রদায়ের মানুষদের সঙ্গে আলাপ-আলোচনায় মিলিত হন। তিনি বলেন, এই কিছুদিন আগে পর্যন্ত ব্রিকস-এর ‘আই’ ছিল এক অস্বচ্ছ ধারণা মাত্র, কিন্তু বর্তমানে ব্রিকস-এর এক গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হয়ে উঠেছে ‘আই’। আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পালনের প্রস্তাব রাষ্ট্রসংঘে গৃহীত হওয়ার পরে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে যোগ কিভাবে জনপ্রিয় হয়ে উঠছে, তারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারত যদি শক্তিশালী হয়ে ওঠে, তাহলে সমগ্র বিশ্বই ফিরে তাকাবে ভারতের দিকে। একুশের শতক যে এশিয়ার শতকে রূপান্তরিত হতে চলেছে, একথা আজ সর্বত্র স্বীকৃত। শুধু তাই নয়, ‘ভারতীয় শতাব্দী’ কথাটি চালু হওয়ায় সম্ভাবনাও ক্রমশ উজ্জ্বল হয়ে উঠছে। উন্নয়নের বর্তমান ধারাকে যদি আগামী ৩০ বছর অক্ষুন্ন ও নিরন্তর রাখা যায়, তাহলে ভারত হয়ে উঠবে পুরোপুরি ভাবে দারিদ্র মুক্ত এক দেশ । তামিলনাড়ুর রাজ্যপাল, তামিলনাড়ুর মুখ্যমন্ত্রী, তামিলনাড়ুর উপ-মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মীবৃন্দ, বিশিষ্ট অতিথিবৃন্দ এবং আপনাদের সকলকেই জানাই ‘সুপ্রভাত’! ডিফেক্সপো-র এটি হল দশম পর্ব। আপনাদের মধ্যে কেউ কেউ হয়তো এই ধরণের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন বেশ কয়েকবার। আবার, অনেকেই হয়তো সূচনাকাল থেকেই এই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থেকেছেন। কিন্তু আমি এই প্রথমবার ডিফেক্সপো-তে উপস্থিত হয়েছি। তামিলনাড়ুর মতো একটি রাজ্যে ঐতিহাসিক কাঞ্চিপুরম অঞ্চলে এই বিশেষ সমাবেশে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি আনন্দিত ও অভিভূত। শিক্ষা ও বাণিজ্যের মধ্য দিয়ে যাঁরা ভারতের ঐতিহাসিক সভ্যতার গোড়াপত্তন করেছিলেন, সেই মহান চোলা রাজদের এই রাজ্যে উপস্থিত থাকার সুযোগ পেয়ে আমি সত্যিই খুব খুশি। আমাদের গৌরবময় সামুদ্রিক উত্তরাধিকারের এ হল এক বিশেষ তটভূমি। এখান থেকেই হাজার হাজার বছর আগে ভারতের অভিযান ও কর্মপ্রচেষ্টা শুরু হয়েছিল ‘পূবের দিকে’ এবং ‘পূবের জন্য’। পাঁচশোরও বেশি ভারতীয় সংস্থা এবং দেড়শোটিরও বেশি বিদেশি সংস্থার এই সমাবেশ সত্যিই অভিনব। চল্লিশটিরও বেশি দেশ তাদের সরকারি প্রতিনিধি পাঠিয়েছে এই বিশেষ অনুষ্ঠানে। ভারতের প্রতিরক্ষা চাহিদা সম্পর্কে শুধুমাত্র আলোচনাই নয়, সেইসঙ্গে এই প্রথমবার এত বিশালভাবে ভারতের নিজস্ব প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষমতা বিশ্বের সামনে তুলে ধরার এক সুযোগ আজ এখানে উপস্থিত। বিশ্বের সর্বত্রই যোগান-শৃঙ্খলের গুরুত্বের সঙ্গে পরিচিত সশস্ত্র বাহিনীগুলি। কিন্তু, যুদ্ধক্ষেত্রে নয়, বরং প্রতিরক্ষা উৎপাদনকেন্দ্রগুলিতেই কৌশলগত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। পরস্পর সংযুক্ত এক বিশ্ব শৃঙ্খলায় বর্তমানে আমরা বাস করছি। যে কোন উৎপাদন সংস্থাতেই যোগান-শৃঙ্খলের দক্ষতার বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। এই কারণে ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কিংবা ‘মেক ফর ইন্ডিয়া’ এবং সেইসঙ্গে ভারত থেকে বিশ্বের অন্যত্র যোগান দেওয়ার কৌশলের বিষয়টি বর্তমানে আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারতের হাজার হাজার বছরের ইতিহাস থেকে এটাই প্রমাণিত সত্য যে অন্যের ভূখণ্ড দখলের কোন অভিপ্রায় বা অভিসন্ধি আমাদের নেই। যুদ্ধ-বিগ্রহের মাধ্যমে অন্য কোন দেশ জয়ের পরিবর্তে ভারত বিশ্বাস করে হৃদয় জয় করে নেওয়ার নীতিতে। রাজা অশোক এবং তার পূর্ববর্তীকালেও মানবতার সর্বোচ্চ আদর্শ রক্ষায় বলিষ্ঠ হয়ে ওঠার নীতিতে বিশ্বাস করে ভারত। আধুনিক যুগে বিগত শতাব্দীর বিশ্বযুদ্ধে প্রাণ হারিয়েছেন ১ লক্ষ ৩০ হাজার ভারতীয় সেনা। অন্যের ভূখণ্ড ভারত কোনদিনই দাবি করেনি। বরং, শান্তি পুনরুদ্ধার প্রচেষ্টায় এবং মানবতার মূল্যবোধকে ঊর্ধ্বে রাখার স্বার্থেই যুদ্ধ করেছিলেন ভারতীয় সেনারা। এমনকি, স্বাধীনতা-পরবর্তীকালেও বিশ্বের সর্বত্রই রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীতে বৃহত্তর সংখ্যায় সেনাকর্মী পাঠিয়েছে ভারত। সেইসঙ্গে, রাষ্ট্রের দায়িত্ব হল তার নাগরিকদের সুরক্ষাদান। আজ থেকে ২০০০ বছরেরও বেশি আগে অর্থশাস্ত্র রচনা করেছিলেন মহান ভারতীয় চিন্তাবিদ তথা কূটনীতিক কৌটিল্য। তিনি বলেছিলেন, রাজা অর্থাৎ শাসকের ধর্মই হল প্রজাদের রক্ষা করা। যুদ্ধ-বিগ্রহের তুলনায় শান্তি যে আরও বেশি মাত্রায় কাম্য, একথাও বলে গেছেন তিনি। ভারতের প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির মূলে রয়েছে এই সমস্ত চিন্তাভাবনা। শান্তির প্রতি আমাদের অঙ্গীকার হল ততটাই শক্তিশালী, যতটাই বলিষ্ঠ হল নিজস্ব ভূখণ্ড এবং দেশের নাগরিকদের জন্য আমাদের সুরক্ষাদানের সঙ্কল্প। এই লক্ষ্যেই আমাদের সশস্ত্র বাহিনীকে সুসজ্জিত করে তুলতে সমস্তরকম পদক্ষেপ গ্রহণে আমরা প্রস্তুত। সরকারি অংশগ্রহণ ও অংশীদারিত্বের সুবাদে প্রতিরক্ষা উৎপাদনের বিষয়টি যে এক কথায় একটি অভিনব বিষয়, সে সম্পর্কেও আমরা অবহিত। এই প্রতিরক্ষা উৎপাদনের জন্য প্রয়োজন সরকারি অনুমতি বা লাইসেন্সের। ভারতে যেহেতু সরকারই হল প্রতিরক্ষা সাজসরঞ্জামের একমাত্র ক্রেতা, খুব স্বাভাবিকভাবেই আপনারা প্রত্যাশা করেন যাতে পুরো বিষয়টির মধ্যে সরকারিভাবে একটি শৃঙ্খলা বজায় থাকে। এমনকি, এই সমস্ত উৎপাদন বিদেশে রপ্তানি করার ক্ষেত্রেও প্রয়োজন সরকারি অনুমতির। এই কারণে গত কয়েক বছর ধরে আমরা খুব সাধারণভাবেই সূচনা করেছি বিভিন্ন পন্থাপদ্ধতির। প্রতিরক্ষা উৎপাদন সম্পর্কিত লাইসেন্সদান, প্রতিরক্ষা রপ্তানি সংক্রান্ত ছাড়পত্র, প্রতিরক্ষা উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ এবং প্রতিরক্ষা সংগ্রহ ব্যবস্থার সংস্কারসাধনের লক্ষ্যে আমরা এ পর্যন্ত বহু পদক্ষেপই গ্রহণ করেছি। শুধু তাই নয়, এই সমস্ত নিয়মনীতি যাতে সফল হয়ে ওঠে, তাও আমরা নিশ্চিত করেছি। শিল্প লাইসেন্সের প্রাথমিক মেয়াদ তিন বছর থেকে বাড়িয়ে করা হয়েছে ১৫ বছর। তবে, তা আরও তিন বছর বাড়ানোর মতো সংস্থানও রয়েছে তার মধ্যে। রপ্তানির জন্যও অনুমোদনদান সম্পর্কিত পন্থাপদ্ধতিকে যথেষ্ট সরল করে তোলা হয়েছে এবং তা তুলে ধরা হয়েছে সরকারি ওয়েবসাইটগুলিতে। উৎপাদনের সাজসরঞ্জামের যন্ত্রাংশ রপ্তানির জন্য এতদিন ধরে চলে আসা কিছু কিছু অপ্রয়োজনীয় ব্যবস্থাকেও তুলে দেওয়া হয়েছে। বৃদ্ধির হার এক্ষেত্রে প্রায় ৩০ শতাংশ। আন্তর্জাতিক যোগান-শৃঙ্খলের সঙ্গেও যুক্ত হয়েছে এই ধরনের শিল্প সংস্থাগুলি। এই প্রসঙ্গের উল্লেখ করার সঙ্গে সঙ্গে একথাও আমার মনে হয়েছে যে অনেক কিছু করা এখনও আমাদের বাকি থেকে গেছে এবং আমরা তা করার জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রতিরক্ষা উৎপাদনের সঙ্গে যুক্ত বিনিয়োগকারীদের জন্য আমরা স্থাপন করেছি একটি বিশেষ সেলও। আমরা সূচনা করেছি, ‘প্রতিরক্ষার উৎকর্ষসাধনে উদ্ভাবন’ নামে একটি কর্মসূচিরও। প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রে বেসরকারি মূলধন ব্যবস্থাকে উৎসাহদানের কর্মসূচিও আমরা গ্রহণ করেছি। স্বপ্নই রূপান্তরিত হয় চিন্তাভাবনায় আর চিন্তাভাবনার রূপান্তর ঘটে কর্মপ্রচেষ্টায়” – একথাই বলেছিলেন তিনি। আমাদের স্বপ্নই হল প্রতিরক্ষা উৎপাদন ক্ষেত্রে নতুন এবং উদ্ভাবনমূলক শিল্পোদ্যোগের উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলার প্রচেষ্টাকে বিশেষ উৎসাহদান। আমরা এগিয়ে যেতে চাই দ্রুততার সঙ্গে। কিন্তু এজন্য কোন শর্টকাট নীতি বা পথ আমরা গ্রহণ করতে আগ্রহী নই। এমন একটা সময় আমরা দেখেছি যখন প্রশাসনিক অন্যান্য অচলাবস্থার মতোই প্রতিরক্ষা প্রস্তুতির বিষয়টিও থমকে দাঁড়িয়েছিল শুধুমাত্র নীতিগত কর্মতৎপরতার অভাবেই। এই ধরণের অযোগ্যতা ও অলসতা, যার পেছনে রয়েছে হয়তো কোন বিশেষ অভিসন্ধি, জাতির যে কতটা ক্ষতি করতে পারে তাও আমরা লক্ষ্য করেছি। যে বিষয়গুলি পূর্ববর্তী সরকারগুলি দীর্ঘদিন ধরেই ঝুলিয়ে রেখেছিল, তার সমাধানে তাই এখন উদ্যোগী হয়েছি আমরা। আপনারা হয়তো লক্ষ্য করেছেন যে ভারতীয় সেনাবাহিনীকে বুলেট প্রুফ জ্যাকেট দেওয়ার বিষয়টিও কত বছর ধরে ঝুলিয়ে রাখা হয়েছিল। আবার সেইসঙ্গে আপনারা এটাও লক্ষ্য করেছেন যে দেশের প্রতিরক্ষা উৎপাদনকে চাঙ্গা করে তুলতে কিভাবে সমস্তরকম প্রক্রিয়াকরণের কাজ আমরা সাফল্যের সঙ্গেই সম্পূর্ণ করেছি। যুদ্ধবিমান সংগ্রহের প্রক্রিয়ার কাজটি এর আগে যে কতদিন ধরে আটকে রাখা হয়েছিল, তাও আপনারা লক্ষ্য করেছেন। আমাদের গুরুত্বপূর্ণ চাহিদাগুলির পূরণে আমরা যে শুধু বলিষ্ঠ পদক্ষেপই গ্রহণ করেছি তাই নয়, ১১০টি যুদ্ধবিমান সংগ্রহের জন্য এক নতুন প্রক্রিয়াকরণের কাজও আমরা শুরু করেছি। কোনরকম ফলাফল ছাড়াই ১০ বছর ধরে কোন বিষয়কে আলোচনার টেবিলে ঝুলিয়ে রাখতে আমরা আগ্রহী নই। আর এইভাবেই যতই আপনারা শিক্ষার বিষয়ে আগ্রহী হয়ে উঠবেন, ততই অবাধ ও মুক্ত হয়ে উঠবে আপনাদের জ্ঞানের স্রোতোধারা”। প্রতিরক্ষা শিল্প সংস্থার স্বার্থে এক নতুন ক্ষেত্র আবিষ্কারের সুযোগ যে এই ডিফেক্সপো আপনাদের সামনে এনে দেবে সে বিষয়ে আমি দৃঢ়প্রত্যয়ী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার নৌ-সেনা দিবস উপলক্ষে নৌ-বাহিনীর চার জওয়ানকে তাদের উদ্ভাবনার প্রতি স্বীকৃতি জানাতে উদ্ভাবনী ট্রফি প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী রবিবার ঘোঘা এবং দহেজ-এর মধ্যে রোল-অন, রোল-অফ (রোরো) ফেরি সার্ভিসের প্রথমপর্যায়ের উদ্বোধন করেন। ফেরি সার্ভিসের প্রথম পর্যায়ে যাত্রী চলাচলের প্রসার ঘটবে। কিন্তু ফেরিসার্ভিসটি পুরোপুরি চালু হয়ে গেলে একই সঙ্গে যাত্রী ও যান পারাপার করতে পারবে। এদিনপ্রধানমন্ত্রী ভাবনগর জেলা সমবায় দুধ উৎপাদন সমিতির সর্বোত্তম পশুখাদ্যপ্রকল্পটিরও আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, মানব সভ্যতার ইতিহাসে নদ-নদী এবং নৌ-বাণিজ্যের গুরুত্বের কথা বিধৃত রয়েছে। শ্রীমোদী বলেন, আজকের এই ঘটনা বা কর্মসূচি আমাদের অতীত গৌরবকে আবার নতুন করে জীবনদানকরল, সৌরাষ্ট্রের সঙ্গে যুক্ত হল দক্ষিণ গুজরাট। গুজরাটেরসার্বিক উন্নয়নে গত তিন বছরে যে বিশেষ নজর ও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে একথাও প্রসঙ্গততুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। এই বিষয়টিকে সামনে রেখে উপকূলঅঞ্চলের পরিকাঠামোর প্রসারে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে। এইধরনের ফেরি সার্ভিস শুধুমাত্র একটি রুটের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না বলে ঘোষণা করেনপ্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ফেরি সার্ভিসের মাধ্যমে যুক্ত করা হবে অন্যান্য স্হান ওঅঞ্চলগুলিকেও। পরিবহণ ক্ষেত্রকে সুসংবদ্ধ এবং অত্যাধুনিক করে তোলা যে কেন্দ্রীয়সরকারের এক বিশেষ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য, এ কথাও প্রকাশ করেন তিনি। এই দুটি অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত ব্রিক্‌স ও বিমস্টেকনেতৃবৃন্দকে স্বাগত জানিয়েছেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক ফেসবুক বার্তায় তিনি বলেছেন : প্রেসিডেন্ট টেমারের সফর আমাদের কৌশলগত সহযোগী রাষ্ট্র ব্রাজিলের সঙ্গেসহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্র উন্মুক্ত করে দেবে। সমষ্টিগত, অন্তর্ভূক্তিমূলক এবং সংবেদনশীল সমাধানের পথখুঁজে দেখার লক্ষ্যে ভারতের জনসাধারণ যে বিশেষ সহযোগী এই আস্থা ও বিশ্বাস এখনসকলের মধ্যেই দৃঢ়মূল হয়ে উঠেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান আমির আমানুল্লাহ খান পুরস্কার প্রদান করা হল। শনিবার হেরাতে আফগান-ভারত মৈত্রী বাঁধের ঐতিহাসিক উদ্বোধনের পর সেদেশের রাষ্ট্রপতি আশরফ ঘানি তাঁকে এই সম্মান প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী ট্যুইটারে তাঁর অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন এই বলে “আমির আমানুল্লাহ খান পুরস্কার দেওয়ায় আফগানিস্তান সরকার’কে গভীরতম কৃতজ্ঞতা জানাই”। আফগান নাগরিক ও বিদেশিদের পরিষেবার স্বীকৃতিস্বরূপ এটাই হল আফগান সরকারের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান। পদকের অপরপৃষ্ঠে যে মানপত্র রয়েছে, তাতে লেখা আছে “নিশান-এ দৌলতি গাজি আমির আমানুল্লাহ খান” অর্থাৎ “গাজি আমির আমানুল্লাহ খান-এর নামে রাষ্ট্রীয় পুরস্কার”। আফগানিস্তানের সর্বোচ্চ অসামরিক সম্মান হল আমির আমানুল্লাহ খান পদক। তিনি আফগানিস্তান’কে স্বাধীনতা এনে দিয়ে ১৯১৯-১৯২৯ সাল পর্যন্ত ঐ দেশ শাসন করেন। রাজা আমানুল্লাহ আফগানিস্তানের আধুনিক সংবিধানকে আরও এগিয়ে নিয়ে সমানাধিকার ও প্রত্যেকের স্বাধীনতা সুনিশ্চিত করেছিলেন। দেশে আধুনিকতা প্রবর্তন করে তিনি ছেলে ও মেয়েদের সর্বধর্মবর্ণজাতি নির্বিশেষে পৃথক পৃথক পঠন-পাঠনের পথ সুগম করেছিলেন এবং ইউরোপ ও এশিয়ার সঙ্গে আফগানিস্তানের বাণিজ্য বাড়িয়েছিলেন। স্বাধীন ও আধুনিক আফগানিস্তান গড়ে তোলায় রাজা আমানুল্লাহ-র স্বপ্ন আজও একই রকম প্রাসঙ্গিক। ভারতের সঙ্গে রাজা আমানুল্লাহ‘র ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক ছিল এবং তিনি ১৯২৯ সালে অল্প সময়ের জন্য ভারতে চলে আসেন। দুটি দেশের ঘনিষ্ঠ অংশীদারিত্বের মধ্যেই ভারতের প্রতি তাঁর স্নেহশীল মানসিকতার প্রতিফলন ঘটেছে। প্রধানমন্ত্রী মোদী হেরাতে ভারত-আফগান মৈত্রীবাঁধ-এর উদ্বোধনের পর আমির আমানুল্লাহ খান পুরস্কার গ্রহণ করেন ৪ জুন, ২০১৬ তারিখে। আফগান সরকার ২০০৬ সালে এই পুরস্কার চালু করেন। “আমাদের এইতরুণ খেলোয়াড়দের জন্য আমি বিশেষভাবে গর্বিত! জুনিয়র হকি’তে বিশ্বকাপ জয়ের জন্যআমাদের জুনিয়র হকি টিম’কে আমার অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামকে ‘রাষ্ট্রপতি’র আগে ‘রাষ্ট্ররত্ন’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন। নতুনদিল্লির ডি আর ডি ও ভবনে আয়োজিত ডঃ কালামের জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে তিনি আজ বক্তব্য রাখছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে অনুপ্রাণিত করতে রামেশ্বরমে ডঃ কালামের স্মৃতিতে একটি স্মারক নির্মাণ করা হবে। তিনি বলেন, যেখানে অধিকাংশ মানুষ জীবনে সুযোগের অপেক্ষা করেন সেখানে ডঃ কালাম সর্বদাই নতুন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার সুযোগ খুঁজতেন। গুজরাটের কচ্ছ-এ ভয়াবহ ভূমিকম্পের পর ঐ অঞ্চলের পুনর্গঠনে ডঃ কালামের সঙ্গে একযোগে তাঁর কাজের স্মৃতিচারণ করেন প্রধানমন্ত্রী। একজন শিক্ষক হিসাবেই তাঁকে মানুষ মনে রাখুক ডঃ কালাম এমনটাই চাইতেন বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে লালন-পালন করার গুরুত্ব বিষয়ে সম্পূর্ণ সচেতন ছিলেন। ভারতে কিভাবে উদ্ভাবনী চিন্তাকে উৎসাহিত করা যাবে ডঃ কালামের জন্মবার্ষিকীতে আমাদের তা ভেবে দেখা দরকার বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে সাইবার নিরাপত্তা, সকলের জন্য আবাসন, নদী সংযোগ প্রকল্প, কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি, সমুদ্রভিত্তিক অর্থনীতি এবং নিখুঁত উৎপাদন প্রক্রিয়ার মতো বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে উদ্ভাবনের প্রয়োজনীয়তার ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, ডঃ কালাম যে কেবলমাত্র অত্যন্ত বিনম্রভাবে জীবন শুরু করে ভারতের সর্বোচ্চ পদে উঠেছিলেন তাই নয়, খুব ছোট অবস্থা থেকে বিরাট প্রতিষ্ঠান স্থাপন করে গেছেন। তাঁর জীবন থেকে আমাদের সকলের অনুপ্রেরণা নিতে হবে বলে শ্রী মোদী বলেন। এর আগে প্রধানমন্ত্রী ডি আর ডি ও ভবনে ডঃ এ পি জে আব্দুল কালামের একটি আবক্ষ মূর্তির আবরণ উন্মোচন করেন। ডঃ কালামের জীবন নিয়ে একটি আলোকচিত্র প্রদর্শনীরও তিনি উদ্বোধন করেন এবং তা ঘুরে দেখেন। শ্রী মোদী ডঃ কালামের ওপর একটি স্মারক ডাকটিকিটও প্রকাশ করেন। মাননীয়প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুট, ২০১৫-র জুনমাসে ভারতে আপনাকে স্বাগত জানানোর সুযোগ আমার হয়েছিল। বিষয়টি অনেকটাদিন ও রাত্রির মতো। এখানকার আবহাওয়া এখন বেশ মনোরম। আপনার নেতৃত্বের একজন গুণগ্রাহী হিসেবে আমি মনে করি যে এ সমস্ত কিছুইআপনার সুযোগ্য নেতৃত্বের এক বহিঃপ্রকাশ মাত্র। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী,ভারত ও নেদারল্যান্ডস-এর মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক যে শতাব্দী প্রাচীন এবং আমাদেরদুটি দেশই এই সম্পর্ককে আরও গভীর ও নিবিড় করে তুলতে আগ্রহী, আপনার এই মন্তব্য সঠিকও যথার্থ বলেই আমি মনে করি। দ্বিপাক্ষিকবিনিয়োগের প্রশ্নে এখনও পর্যন্ত নেদারল্যান্ডস রয়েছে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগেরক্ষেত্রে পঞ্চম বৃহত্তম একটি রাষ্ট্র। গত তিন বছরে ভারতে তৃতীয় বৃহত্তম প্রত্যক্ষবিদেশি বিনিয়োগের উৎস হয়ে উঠেছে নেদারল্যান্ডস। ভারতেরঅর্থনৈতিক বিকাশ প্রচেষ্টায় এবং অর্থনীতির অগ্রাধিকারের ক্ষেত্রগুলিতেনেদারল্যান্ডস যে স্বাভাবিকভাবে আমাদের এক প্রকৃত অংশীদার একথার পুনরাবৃত্তিবাহুল্য মাত্র। ভারতীয়বংশোদ্ভূত যে সমস্ত মানুষ নেদারল্যান্ডস-এ বসবাস করছেন, তাঁদের সঙ্গে মিলিত হওয়ারএক সুযোগও আজ আমার রয়েছে। এখানকার প্রবাসী ভারতীয়রা দু’দেশের মধ্যে সংযোগ ওযোগাযোগের এক সেতুবন্ধনের কাজ করে চলেছেন। দু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে এই মৈত্রীসম্পর্ককে আরও নিবিড় করে তুলতে আমরা আগ্রহী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী (৯ই অক্টোবর) হরিয়ানার রোহতকের সাম্পলা পরিদর্শন করবেন। সেখানে তিনি দীনবন্ধু স্যর ছোটুরামের মূর্তির আবরণ উন্মোচন করবেন। শিক্ষা ক্ষেত্র এবং অন্যান্য সামাজিক কাজের জন্যও তিনি স্মরণীয় হয়ে রয়েছেন। একটি জনসভায় প্রধানমন্ত্রী সোনেপতের একটি রেল কোচ পুনর্গঠন কারখানার ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এই প্রকল্পের কাজ শেষ হলে এটি উত্তর ভারতে রেল কোচের মেরামতি ও রক্ষণাবেক্ষণের একটি বড় কেন্দ্র হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের প্রতিষ্ঠা দিবসের রৌপ্য জয়ন্তীতে ভাষন দেন। তিনি বলেন, বিগত আড়াই দশক ধরে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন, এনএইচআরসি দেশে বঞ্চিত ও নিপীড়িত মানুষের মুখে ভাষা দিয়ে জাতি গঠনের কাজে অবদান রেখে চলেছে। তিনি বলেন, আমাদের সংস্কৃতিতে মানবাধিকার রক্ষার বিষয়টি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হয়ে উঠেছে। স্বাধীনতার পরবর্তী সময়ে নিরপেক্ষ এবং স্বাধীন বিচারবিভাগ, এক সক্রিয় গণমাধ্যম ও নাগরিক সমাজ এবং এনএইচআরসি-র মত সংগঠনগুলি মানবাধিকার রক্ষার কাজ করে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবাধিকার সুরক্ষার বিষয়টিকে শুধুমাত্র এক শ্লোগান হিসাবে ধরলে চলবে না, এটিকে আমাদের জাতীয় জীবনের অঙ্গ হিসাবে মনে করতে হবে। গত চার বছরে দেশের দরিদ্র মানুষের জীবনের মানোন্নয়নে বিভিন্ন ধরনের অনেক কাজ হয়েছে। তিনি সম্প্রতি চালু হওয়া স্বাস্হ্য বিমা উদ্যোগ- আয়ুষ্মান ভারতের অধীনে, প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার কথাও উল্লেখ করেন। কেন্দ্রীয় সরকার কর্তৃক গৃহীত আর্থিক অর্ন্তভূক্তি উদ্যোগের কথাও তিনি বলেন। শ্রী মোদী বলেন, মানুষের মৌলিক অধিকার সুরক্ষিত রাখার জন্য যেসব পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে তারমধ্যে অন্যতম হচ্ছে, মুসলিম মহিলাদের তিন তালাকের মতো কু-প্রথার হাত থেকে সুরক্ষা দেওয়া। প্রধানমন্ত্রী সবার নাগালের মধ্যে সুবিচারের ব্যবস্হা, যেমন- ই-আদালত এবং জাতীয় বিচারবিভাগীয় তথ্য গ্রীডকে শক্তিশালী করার কথাও উল্লেখ করেন। তিনি আধারকে একটি প্রযুক্তিভিত্তিক ক্ষমতায়ণের উদ্যোগ বলে বর্ণানা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাধারণ মানুষের অংশগ্রহণ ‘জন ভাগিদারী’র ফলেই এইসব উদ্যোগ সফল হয়েছে। মানবাধিকার বিষয়ে সচেতনতার পাশাপাশি নাগরিকদের দায়িত্ব এবং কর্তব্য বিষয়েও সচেতন হওয়ার জন্য তিনি আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যাঁরা তাঁদের দায়িত্বের কথা বোঝেন, তাঁদের অন্যের অধিকারকে শ্রদ্ধা করা উচিত। বিভিন্ন আবাসন ও সড়ক নির্মাণের কাজে এই সমস্ত ফেলে দেওয়া মাল-মশলার চাহিদা রয়েছে প্রচুর। তিনি বলেন, অতীতের মধ্যেপ্রাণসঞ্চার ঘটল এই বইগুলি প্রকাশের মধ্য দিয়ে। বিভিন্ন রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটের ব্যক্তিরা কিভাবে যুক্ত প্রচেষ্টায়মিলিত হতে পারেন তা আমরা শিখতে পারি রাষ্ট্রপতি শ্রী মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকে। সেইসঙ্গে, সুলতানপুর লোধি রেল স্টেশনের মানোন্নয়ন করে যাবতীয় আধুনিক সুযোগ-সুবিধা গড়ে তোলা হবে। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গুরুনানক দেবজি নামাঙ্কিত বিশেষ পদ তৈরি: বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে গুরুনানক দেবজি নামাঙ্কিত বিশেষ পদ তৈরির সিদ্ধান্তও মন্ত্রিসভার বৈঠকে অনুমোদিত হয়েছে। এর ফলে, অমৃতসরের গুরুনানক দেব বিশ্ববিদ্যালয়ে ইন্টারফেইথ স্টাডি সেন্টার গড়ে তোলা হবে। এছাড়াও, গ্রেট ব্রিটেন ও কানাডার একটি করে বিশ্ববিদ্যালয়ে গুরুনানক দেবজি নামাঙ্কিত বিশেষ পদ তৈরি করা হবে। নতুন দিল্লীতে গুরুনানক দেবজির জীবন ও শিক্ষা নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের এক সেমিনারেরও আয়োজন করা হবে। দেশে এবং বিদেশে গুরুনানক দেবজির জন্মবার্ষিকী উদযাপন: গুরুনানক দেবজির ৫৫০তম জন্মবার্ষিকী যথাযথভাবে উদযাপনের জন্য রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিকে অনুরোধ করা হবে। বিদেশে ভারতীয় দূতাবাসগুলি বিশেষ অনুষ্ঠান ও কর্মসূচির আয়োজন করবে। স্মারক মুদ্রা ও ডাকটিকিট প্রকাশ: গুরুনানকের জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানকে স্মরণীয় করে রাখতে ভারত সরকার স্মারক মুদ্রা ও ডাকটিকিট প্রকাশ করবে। ধার্মিক অনুষ্ঠান ও প্রকাশনা: সারা দেশ জুড়ে ধার্মিক কর্মসূচি ও অনুষ্ঠান আয়োজন করা হবে। দূরদর্শন গুরুনানক দেবজির অনুষ্ঠান সম্প্রচার করবে। ন্যাশনাল বুক ট্রাস্ট বিভিন্ন ভারতীয় ভাষায় রচিত গুরবাণী প্রকাশ করবে। বিশ্বের বিভিন্ন ভাষায় গুরুনানক দেবজির লেখা প্রকাশের জন্য ইউনেস্কোকে অনুরোধ করা হবে। তীর্থযাত্রীদের জন্য বিশেষ ট্রেন: ১) স্পেকট্রামের জন্য টেলিকম পরিষেবা প্রদাতারবিলম্বিত প্রদেয় ঋণের পুনর্গঠন ২) স্পেকট্রাম অধিগ্রহণের সর্বোচ্চ সীমা সংশোধন ট্রাই ও টেলিকম কমিশনের প্রস্তাবের ওপর ভিত্তি করেমন্ত্রিসভা স্পেকট্রাম অধিগ্রহনের সর্বোচ্চ সীমা সংশোধন করারও অনুমোদন দিয়েছে, যাহচ্ছে নিম্নরূপ:- · সমস্ত স্পেকট্রাম সীমা বর্তমানের ২৫ শতাংশ থেকে সংশোধিত করে৩৫ শতাংশ করা হয়েছে| · এক গিগাহার্জ-এর চেয়ে বেশি ব্যক্তিগত অথবা সম্মিলিতভাবেস্পেকট্রাম অধিগ্রহণের জন্য কোনো সীমা থাকবে না| শহরগুলির নাম পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে উচ্চ আদালতগুলির নামেও পরিবর্তন আনার যুক্তি মেনে নেওয়া হয়। দিল্লিতে ৭টি জেনারেল পুল সরকারি আবাসনের পুনর্বিকাশে কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার অনুমোদন পাওয়া গেছে। মৌলানা আবুলকালাম আজাদের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ২৭ জানুয়ারি কেরলের কোচি সফর করবেন। সফরকালে তিনি কোচিতে রাষ্ট্রায়ত্ত ভারত পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন লিমিটেডের (বিপিসিএল) এক সুসংবদ্ধ তৈল শোধনাগারের ক্ষমতা সম্প্রসারণ কমপ্লেক্স জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ উপলক্ষে ফলকের আবরণ উন্মোচন করবেন। তিনি সেখানে পেট্রো-রসায়ন কমপ্লেক্সেরও ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করবেন। এই প্রতিষ্ঠানে প্রতি বছর ২০টি বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রায় এক হাজার জন যুবক-যুবতীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া যাবে। আয়করপ্রশাসন সম্পর্কিত ক্ষোভ ও অভিযোগের নিষ্পত্তি সংক্রান্ত কাজকর্মের বিষয়টি আজবিশেষভাবে পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রী। খনিজসমৃদ্ধ ১২টি রাজ্য থেকে এ পর্যন্ত ৩,২১৪ কোটি টাকা সংগৃহীত হয়েছে বলে জানা যায়।ভবিষ্যতে সংগ্রহের মাত্রা আরও বৃদ্ধি পাবে বলেও আশা করা হচ্ছে। খনিজ সমৃদ্ধজেলাগুলিতে আদিবাসী সহ অনগ্রসর বিভিন্ন সম্প্রদায়ের মানুষের কল্যাণে অর্থেরসর্বোচ্চব্যবহারের দিকটি নিশ্চিত করে তুলতে প্রধানমন্ত্রী আর্জি জানান সংশ্লিষ্টকর্মী ও আধিকারিকদের কাছে। আমার প্রিয় দেশবাসী , আপনাদের সবাইকে নমস্কার ! আকাশবাণীর মাধ্যমে ‘ মন কি বাত ’ করতে করতে তিন বছর পূর্ণ হয়ে গেল। আজ এটি ৩৬ – তম পর্ব। ‘ মন কি বাত ’ হল একরকম ভারতের যে সদর্থক শক্তি আছে , দেশের কোণে কোণে যে ভাবনাচিন্তা পূর্ণ হয়ে রয়েছে , ইচ্ছা রয়েছে , প্রত্যাশা আছে , কোথাও কোথাও নালিশও আছে – জনগণের মনে যে যে ভাবনার উদয় হতে থাকে ,‘ মন কি বাত ’ সেই সব ভাবনার সঙ্গে আমার নিজেকে যুক্ত করার এক সুযোগ দিয়েছে , আর আমি কখনও এটা বলি না যে , এটা আমার ‘ মন কি বাত ’ । এই ‘ মন কি বাত ’ দেশবাসীর মনের সঙ্গে যুক্ত , তাদের আবেগের সঙ্গে যুক্ত , তাদের আশা – আকাঙ্ক্ষার সঙ্গে যুক্ত হয়ে আছে। আর যখন ‘ মন কি বাত ’- এর কথা বলি , তখন দেশের প্রতিটি কোণে যেসমস্ত মানুষ তাঁদের কথা আমাকে পাঠান , আপনাদের তো হয়ত আমি খুব কম কথা বলতে পারি , কিন্তু আমার প্রচুর বিষয় মিলে যায়। বেশীরভাগই আমাকে উৎসাহ দেয়। আর আমি তো মাসে একবার আপনাদের আধঘণ্টা সময় নিই , কিন্তু মানুষেরা তিরিশ দিন ‘ মন কি বাত ’- এর জন্য নিজের কথা পৌঁছতে থাকেন। আর তার ফলে যা হয়েছে তা হল , সরকারেরও সংবেদনশীলতা , সমাজের দূর – সুদূরে কত না শক্তি রয়েছে , তার প্রতি তাদের মনোযোগ দেওয়ার এক সহজ ভাবনা তৈরি হচ্ছে। আর এজন্য ‘ মন কি বাত ’- এর তিন বছরের এই যাত্রা দেশবাসীর – তাদের ভাবনাচিন্তার , তাদের অনুভূতির এক যাত্রা। আর হয়ত এত কম সময়ে দেশের সাধারণ মানুষের আবেগ জানা – বোঝার জন্য যে সুযোগ আমার হয়েছে তার জন্য আমি দেশবাসীর কাছে খুবই কৃতজ্ঞ। ‘ মন কি বাত ’- এ আমি প্রায়ই আচার্য বিনোবা ভাবের সেই কথাটি মনে রাখি। আমি অবশ্যই মানি , এখন তিন বছর পরে সমাজবিজ্ঞানী , বিশ্ববিদ্যালয় , গবেষক , গণমাধ্যম বিশেষজ্ঞরা অবশ্যই এর বিশ্লেষণ করবেন। প্রতিটি জিনিসের প্লাস – মাইনাস তুলে ধরবেন , আর আমার বিশ্বাস যে , এই বিচার – বিশ্লেষণ ভবিষ্যতে ‘ মন কি বাত ’- এর জন্য অনেক উপযোগী হবে , তাতে এক নতুন চেতনা , নতুন উদ্যম মিলবে। আর আমি যখন একবার ‘ মন কি বাত ’- এ বলেছিলাম , আমাদের খাওয়ার সময়ে চিন্তা করা উচিত যে , যতটা প্রয়োজন , ততটাই নেব , আমরা তা নষ্ট করব না। একবার আমি ‘ মন কি বাত ’- এ মহারাষ্ট্রের এক অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক শ্রীযুক্ত চন্দ্রকান্ত কুলকার্ণির কথা বলেছিলাম , যিনি নিজের পেনশনে যে ষোল হাজার টাকা পেতেন , তার থেকে পাঁচ হাজার টাকা করে তিনি ৫১টি পোস্ট – ডেটেড চেকের মাধ্যমে স্বচ্ছতার জন্য দান করেছিলেন। আর তারপর তো আমি দেখেছি যে স্বচ্ছতার জন্য এই ধরনের কাজ করতে কত মানুষ এগিয়ে এসেছেন। একবার আমি হরিয়ানাতে এক পঞ্চায়েত প্রধানের ‘ সেলফি উইথ ডটার ’ দেখি আর আমি ‘ মন কি বাত ’- এ তা সবার সামনে রাখি। দেখতে না দেখতে শুধু ভারত থেকেই নয় , সারা বিশ্ব জুড়ে ‘ সেলফি উইথ ডটার ’ এক বড় অভিযান শুরু হয়ে যায়। প্রতি মা – বাবার মনে হতে থাকে যে নিজের কন্যার সঙ্গে সেলফি তুলি। প্রতিটি মেয়ের মনে হতে থাকে যে আমারও কোন মহিমা আছে , কোনো মহত্ত্ব আছে। কিছুদিন আগে ভারত সরকারের পর্যটন দপ্তরের সঙ্গে বসেছিলাম। আমি যখন পর্যটকদের বলি যে আপনারা Incredible India – তে যেখানে গেছেন সেখানকার ফোটো পাঠান। ভারতের প্রতি কোণ থেকে লাখখানেক ছবি একরকম পর্যটন ক্ষেত্রে যাঁরা কাজ করেন তাঁদের এক মস্ত বড় সম্পদ হয়ে উঠেছে। ছোটো ছোটো ঘটনা কত বড় আন্দোলন তৈরি করে দেয় , তা ‘ মন কি বাত ’- এ আমি অনুভব করেছি। আজ ইচ্ছে করছে , কারণ যখন ভাবছি যে তিন বছর হয়ে গেছে , তো গত তিন বছরের কত ঘটনা আমার মনে ভিড় করে আসছে। দেশ সঠিক রাস্তায় যাওয়ার জন্য প্রতি মুহূর্তে এগিয়ে চলেছে। দেশের প্রতিটি নাগরিক অন্যের ভালোর জন্য , সমাজের ভালোর জন্য , দেশের উন্নতির জন্য কিছু না কিছু করতে চাইছেন। আমার তিন বছরের ‘ মন কি বাত ’- এর যাত্রায় , আমি এটা দেশবাসীর কাছ থেকে জেনেছি , বুঝেছি , শিখেছি। যে কোনো দেশের জন্যই এ এক মস্ত বড় সম্পদ , এক মস্ত বড় শক্তি। আমি অন্তর থেকে দেশবাসীকে প্রণাম জানাচ্ছি। খাদির বিক্রি বেড়ে গেছে আর তার জন্য গরীবদের রোজগারের সঙ্গে এক সরাসরি সম্পর্ক তৈরি হয়েছে। ২ – রা অক্টোবর খাদিতে ছাড় দেওয়া হয় , অনেকটাই ছাড় পাওয়া যায়। আমি আরও একবার বলব যে , খাদির জন্য যে অভিযান চলছে , তাকে আমরা আরও এগিয়ে নিয়ে যাই , আরও বাড়াই। খাদি কিনে গরীবদের ঘরে দীপাবলির প্রদীপ জ্বালাব , এই ভাবনা নিয়ে আমরা কাজ করি। আমাদের দেশের দরিদ্রদের এই কাজের থেকে এক শক্তি মিলবে , আর আমাদের তা করা উচিত। আর এই খাদির প্রতি রুচি বাড়ার জন্য খাদি ক্ষেত্রের কর্মীদের , ভারত সরকারের খাদির সঙ্গে যুক্ত মানুষদের এক নতুন ভাবে ভাবনাচিন্তা করার উৎসাহ বেড়েছে। নতুন প্রযুক্তি কীভাবে আনবে , উৎপাদনক্ষমতা কীভাবে বাড়াবে , সৌরশক্তি ও হস্তচালিত তাঁত কীভাবে নিয়ে আসবে ? পুরনো যে ঐতিহ্য ছিল , যা প্রায় ২০ , ২৫ , ৩০ বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়েছিল , তাকে পুনর্জীবিত কীভাবে করা যায়। উত্তর প্রদেশে বারাণসীর সেবাপুরে – সেবাপুরীর এক খাদি আশ্রম ২৬ বছর ধরে বন্ধ হয়ে পড়েছিল , কিন্তু আজ তা পুনর্জীবিত হয়েছে। অনেক রকম পদ্ধতি যুক্ত হয়েছে। অনেক লোকের রোজগারের নতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। কাশ্মীরের পম্পোরে বন্ধ হয়ে থাকা খাদি ও গ্রামোদ্যোগ প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আবার চালু হয়েছে আর কাশ্মীরের কাছে তো এই ক্ষেত্রে দেওয়ার অনেক কিছু আছে। এখন এই প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আবার শুরু হওয়ার জন্য নতুন প্রজন্ম আধুনিকভাবে নির্মাণ কাজ করতে , বয়ন করতে , নতুন জিনিস তৈরি করতে এক সাহায্য মিলছে আর আমার ভালো লাগছে যে বড় বড় করপোরেট হাউস দীপাবলির সময় যে উপহার দেয় , তারা ইদানিং খাদির জিনিস দিতে শুরু করেছে। লোকেরাও একজন আরেকজনকে উপহার হিসেবে খাদির জিনিস দিচ্ছে। সহজভাবে কোন জিনিস কীভাবে এগিয়ে চলে তা আমরা সবাই অনুভব করছি। আমার প্রিয় দেশবাসী , গতমাসে ‘ মন কি বাত ’- এ আমরা সবাই মিলে এক সংকল্প করেছিলাম এবং আমরা ঠিক করেছিলাম যে গান্ধী জয়ন্তীর আগের ১৫ দিন সারা দেশ জুড়ে স্বচ্ছতা উৎসব পালন করব। স্বচ্ছতার সঙ্গে জনমনকে যুক্ত করব । আমাদের শ্রদ্ধেয় রাষ্ট্রপতি এই কাজ শুরু করেছেন এবং দেশ তাতে যুক্ত হয়েছে। আবালবৃদ্ধ , পুরুষ – মহিলা , শহর – গ্রাম – প্রত্যেকেই আজ স্বচ্ছতা অভিযানের এক অংশ হয়ে উঠেছে। আমি যখন সংকল্প সাধনের কথা বলি , তখন আমাদের এই স্বচ্ছতা অভিযান সংকল্প সাধনের পথে কীভাবে এগিয়ে চলেছে তা আমরা চোখের সামনে দেখতে পাচ্ছি। সবাই এটাকে স্বীকার করে , সহায়তা করে এবং এর সাফল্যের জন্য কোনো না কোনো ভাবে সাহায্য করেন। জনসাধারণ ব্যবহার করেন এই রকম জায়গা নোংরা থাকলে আজকাল মানুষ বিরক্তি প্রকাশ করেন , ফলে যাঁরা এই সব জায়গা দেখাশোনার কাজ করেন তাঁরা একধরনের তাগিদ অনুভব করেন। এবার ‘ স্বচ্ছতাই সেবা ’ অভিযানে বেশ কিছু প্রতিযোগিতার আয়োজন করা হয়েছিল। আড়াই কোটিরও বেশি শিশু স্বচ্ছতা বিষয়ে রচনা প্রতিযোগিতায় অংশ গ্রহণ করেছিল। হাজার হাজার শিশু পেইণ্টিং করেছে। স্বচ্ছতা বিষয়ে তাদের নিজের নিজের কল্পনা প্রকাশ করতে ছবি এঁকেছে। যখনই স্বচ্ছতার কথা হয় , তখন আমি কিন্তু প্রচার মাধ্যমের মানুষদের প্রতি আমার কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করতে কখনো ভুলি না। এই আন্দোলনকে তাঁরা পবিত্ররূপে এগিয়ে নিয়ে গেছেন। আমাদের দেশের ইলেক্ ‌ ট্রনিক মিডিয়া , প্রিণ্ট মিডিয়া দেশের কতবড়ো সেবার কাজ করতে পারে , সেটা আমরা ‘ স্বচ্ছতাই সেবা ’ আন্দোলনে দেখছি। সম্প্রতি কয়েকদিন আগে কেউ শ্রীনগরের ১৮ বছরের তরুণ বিলাল ডার – এর সম্পর্কে আমার মনোযোগ আকর্ষণ করে। শ্রীনগরের পাশে এশিয়ার সব থেকে বড় যে লেক আছে , সেখানেও প্লাসটিক , পলিথিন , ব্যবহৃত বোতল , ময়লা আবর্জনা পরিষ্কার করে। এর থেকে কিছু উপার্জনও করে নেয়। বিলাল ডার বয়সে ছোট কিন্তু স্বচ্ছতার প্রতি যাঁদের আগ্রহ আছে , তাঁদের কাছে প্রেরণাদায়ক। আমি বিলাল ডারকে অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি। অক্টোবর মাস আমাদের অনেক মহাপুরুষকে স্মরণ করার মাস। মহাত্মা গান্ধী থেকে সরদার প্যাটেল এই অক্টোবর মাসে অনেক মহাপুরুষ জন্ম নিয়েছেন , যাঁরা বিংশ শতাব্দী এবং একবিংশ শতাব্দীতে আমাদের নেতৃত্ব দিয়েছেন , আমাদের চলার পথ দেখিয়েছেন আর দেশের জন্য যাঁরা নিজেরা অনেক কষ্ট সহ্য করেছেন। এবছর তো আবার নানাজীর এবং দীনদয়ালজীর জন্মের শতবর্ষ। এই সকল মহাপুরুষদের একটা কেন্দ্রবিন্দু ছিল – সেটা কি ? তাঁদের সকলের জন্য একটা বিষয় স্বাভাবিক ছিল , সেটা হল দেশের জন্য বাঁচা , দেশের জন্য কিছু করা আর শুধুমাত্র উপদেশ দেওয়া নয় , জীবন যাপনে সেই উপদেশ পালন করা। গান্ধীজী , জয়প্রকাশজী , দীনদয়ালজীরা এমন মহাপুরুষ ছিলেন যাঁরা ক্ষমতার অলিন্দ থেকে অনেক দূরে থাকতেন কিন্তু প্রতিটি মুহূর্ত সাধারণ মানুষের সঙ্গে জীবন যাপন করতেন , সংগ্রাম করতেন , সর্বজনের হিতার্থে , সর্বজনের সুখার্থে কিছু না কিছু করতেন। ভারতের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি শ্রীমান আব্দুল কালামজী যখন তরুণদের সঙ্গে কথা বলতেন , তখন তিনি প্রায়ই নানাজী দেশমুখের গ্রামীণ বিকাশের কথা আলোচনা করতেন। গভীর আন্তরিকতায় তিনি সেই কর্মসূচির উল্লেখ করতেন এবং তিনি নিজেও নানাজীর এই কাজ প্রত্যক্ষ করার জন্য গ্রামে গিয়েছিলেন। দীনদয়াল উপাধ্যায়ের মতো মহাত্মা গান্ধীও সমাজের নিম্নবর্গের মানুষজনের কথা বলতেন। দীনদয়ালজী সমাজের নীচের স্তরের গরীব , পীড়িত , শোষিত , বঞ্চিত জনসাধারণের জীবনে পরিবর্তন আনার কথা বলতেন ; শিক্ষা এবং উপার্জনের মাধ্যমে কীভাবে সে বদল আনা যেতে পারে , সে বিষয়ে আলাপ আলোচনা করতেন। এইসব মহাপুরুষকে স্মরণ করলে তাঁদের কোনও উপকার করা হয় না , আমরা এঁদের স্মরণ করি , যাতে সামনে এগিয়ে চলার রাস্তা খুঁজে পাই , যাতে ভবিষ্যতের জন্য সঠিক দিগ্ ‌ নির্দেশ মেলে। আমরা খুব সহজে বলে থাকি – বিবিধের মাঝে ঐক্যই ভারতের বিশেষত্ব। বিবিধতার জন্য আমরা গর্বিত , অথচ যে বৈচিত্র্যের জন্য আমরা গর্বিত , নিজেদের সেই বিবিধ বৈশিষ্ট্যকে অনুভব করার চেষ্টা কখনও করি কি ? আমি হিন্দুস্থানে আমার সমস্ত দেশবাসীকে বারবার বলতে চাই , বিশেষ করে আমার যুবপ্রজন্মকে বলতে চাই যে , আমরা এক জাগ্রত অবস্থার মধ্যে আছি। এই ভারতের বিচ্ছিন্নতাকে অনুভব করুন , তাকে স্পর্শ করুন , তার গৌরবকে উপলব্ধি করুন। আপনাদের অন্তরস্থিত ব্যক্তিত্বের বিকাশের জন্য আমাদের দেশের এই বৈচিত্র্য যেন বিরাট এক পাঠশালার ভূমিকা পালন করে। আপনারা বিদেশে যান , আমার কোন আপত্তি নেই , কিন্তু কখনও কখনও নিজের ঘরটাকেও তো দেখবেন ! উত্তর ভারতের মানুষ জানবেন না দক্ষিণ ভারতে কী আছে ? পশ্চিম ভারতের মানুষটি জানবেন না যে পূর্বভারতে কী আছে ? আমাদের এই দেশ কতরকম বৈচিত্র্যে ভরা। মহাত্মা গান্ধী , লোকমান্য তিলক , স্বামী বিবেকানন্দ , আমাদের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি আব্দুল কালামজী – এঁরা প্রত্যেকেই যখন ভারত ভ্রমণ করেছেন , তখন তাঁদের মধ্যে দেশকে দেখার , বোঝার , দেশের জন্য বাঁচা – মরার এক নতুন প্রেরণা জেগে উঠেছিল। এইসব মহাপুরুষেরা এদেশকে ব্যাপকভাবে ঘুরে দেখেছেন। আমরাও কি পারিনা আমাদের দেশের ভিন্ন ভিন্ন রাজ্যের , ভিন্ন ভিন্ন সমাজের বা গোষ্ঠীর নিয়মকানুন , পরম্পরা , তাদের পোশাক – পরিচ্ছদ , খাওয়াদাওয়াকে একজন শিক্ষার্থীর মতো করে শিখে নিতে , বুঝে নিতে , সে জীবনচর্যা আয়ত্ত করতে ? পর্যটনে value addition তখনই হবে যখন আমরা শুধু দর্শক হিসেবে নয় , একজন ছাত্রের মতো সেই সব জায়গার বৈশিষ্ট্যকে গ্রহণ করতে , বুঝতে এবং আত্মীকরণ করতে সচেষ্ট হব। আমার নিজের হিন্দুস্থানের পাঁচশোর বেশি জেলায় যাওয়ার সুযোগ হয়েছে। সাড়ে চারশোর বেশি জেলায় রাত্রিবাস করারও অভিজ্ঞতা হয়েছে। আজ যখন আমি দেশের এই গুরত্বপূর্ণ দায়িত্ব সামলাচ্ছি , তখন সেই ভ্রমণের অভিজ্ঞতা আমার খুবই কাজে লাগে। তার জন্যেই বহু জিনিস বুঝতে আমার বিশেষ সুবিধা হয়। আপনাদের কাছেও আমার অনুরোধ , বিশাল এই ভারতে ‘ বিবিধের মধ্যে একতা ’ – এটাকে শুধু স্লোগান হিসেবে না দেখে , আমাদের অপার শক্তির এই ভাণ্ডারকে উপলব্ধি করুন। ‘ এক ভারত শ্রেষ্ঠ ভারত ’- এর স্বপ্ন এরই মধ্যে নিহিত আছে। খাদ্য – পানীয়ই কত রকমের আছে ! সারা জীবন ধরে প্রত্যেক দিন যদি এক একরকমের নতুন খাবার খাওয়া যায় , তা – ও পুনরাবৃত্তি হবে না। এটাই আমাদের পর্যটনের এক বড় শক্তি। ভারতকে নিজের মধ্যে গ্রহণ করুন। কোটি কোটি দেশবাসীর বিভিন্নতাকে আপন করে নিন। এই উপলব্ধি আপনার জীবনকে সমৃদ্ধ করে তুলবে। আপনার চিন্তার ব্যাপ্তি বিশাল হয়ে যাবে। উপলব্ধির চেয়ে বড় শিক্ষক আর কী হতে পারে ! সাধারণভাবে অক্টোবর থেকে বড়জোর মার্চ পর্যন্ত সময়টি পর্যটনের জন্য প্রশস্ত। এই সময়েই সকলে বেড়াতে যান। আমার বিশ্বাস , এবার যদি আপনারা বেড়াতে যান , তবে আমার অভিযানকেই আপনারা আরও এগিয়ে নিয়ে যাবেন। সেখানকার মানুষদের সঙ্গে পরিচয় হলে তাঁদেরও ছবি পাঠান। শুধু সেখানকার সৌধ বা স্থাপত্যের নয় , শুধু প্রাকৃতিক সৌন্দর্যেরই নয় , সেখানকার জনজীবনের সম্পর্কেও দু – চার কথা লিখুন। আমি একটা ব্যাপার ভেবে দেখেছি , ভারতের পর্যটন শিল্পের উন্নতির জন্য আপনারা যদি নিজের নিজের রাজ্যের সাতটি সেরা ট্যুরিস্ট ডেস্টিনেশন কী হতে পারে , প্রত্যেক ভারতবাসীকে নিজের রাজ্যের এই সাতটি জিনিসের বিষয়ে জানা দরকার। যদি সম্ভব হয় ওই সাতটি জায়গায় যেতে হবে। আপনি এই বিষয়ে কোন তথ্য দিতে পারবেন কি ? Narendramodiapp এ এগুলো রাখতে পারবেন কি ? ‘ হ্যাশ ট্যাগ Incredible India ’- তে রাখতে পারবেন কি ? আপনি দেখুন , একই রাজ্যের সবাই যদি এইসব তথ্য পাঠান , তাহলে আমি সরকারকে বলবো ওগুলোর scrutiny করুক , আর কোন সাতটি common বিষয় প্রত্যেক রাজ্য থেকে এসেছে , সেইগুলোকে নিয়ে প্রচার বিষয় বানাক । অর্থাৎ , এক প্রকার মানুষের অভিপ্রায় থেকে tourist destination – এর উন্নতি কিভাবে করা যায়। ভারত সরকার এটা নিয়ে কাজ করবে। এরকম ভালো দেখার জায়গা যেগুলো হবে , সেগুলো নিয়ে film তৈরি , ভিডিও তৈরি , প্রচার সাহিত্য তৈরি করা , বাহবা দেওয়া – আপনার দ্বারা নির্ণয় করা বিষয় সরকার মেনে নেবে। আসুন , আমার সঙ্গে যোগদান করুন। এই অক্টোবর মাস থেকে মার্চ মাস পর্যন্ত সময়ে পর্যটনের উন্নতিতে আপনিও এক বড়ো অনুঘটক হতে পারেন। আমার মনে গভীর প্রভাব ফেলে। কারণ আমিও তো আপনাদের মতো মানুষ। কিছুদিন আগের ঘটনা , হয়ত আপনারও দৃষ্টি আকর্ষিত হয়েছে – নারীশক্তি আর দেশপ্রেমের এক আশ্চর্য উদাহরণ দেশবাসী দেখলো। ভারতীয় সেনা লেফটেন্যান্ট স্বাতি এবং নিধি নামে দুই বীরাঙ্গনাকে পেয়েছে , ওঁরা অসাধারণ বীরাঙ্গনা। অসাধারণ এইজন্য যে , স্বাতি আর নিধির স্বামী মা – ভারতীর সেবা করতে করতে শহীদ হয়ে গিয়েছিলেন। আমরা চিন্তা করতে পারি এই কম বয়সে সংসার বিনষ্ট হলে মনের অবস্থা কিরকম হবে ? কিন্তু শহীদ কর্নেল সন্তোষ মহাদিকের স্ত্রী স্বাতি মহাদিক এই কঠিন পরিস্থিতির বিরুদ্ধে লড়াই করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছেন , আর ভারতীয় সেনাতে যোগদান করেছেন। ১১ মাস ধরে কঠোর পরিশ্রম করে প্রশিক্ষণ নিলেন এবং নিজের স্বামীর স্বপ্নকে সাকার করতে নিজের জীবন সমর্পণ করেছেন। প্রত্যেক দেশবাসীকে আমাদের এই নারীশক্তির উপর , আমাদের এই বীরাঙ্গানাদের প্রতি সম্মান দেখানো খুবই স্বাভাবিক । আমি এই দুই বোনকে মন থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। ওঁরা দেশের কোটি কোটি লোকের কাছে এক নতুন প্রেরণা , এক নতুন চেতনা জাগ্রত করেছেন। ওই দুই বোনকে অনেক অনেক অভিনন্দন। আমার প্রিয় দেশবাসী , নবরাত্রির উৎসব আর দীপাবলির মাঝখানের এই সময় আমাদের দেশের যুব প্রজন্মের জন্য এক অনেক বড়ো সুযোগও। FIFA under-17 এর World Cup আমাদের এখানে হচ্ছে। আমার বিশ্বাস চতুর্দিকে ফুটবলের গুঞ্জন শোনা যাবে। প্রত্যেক প্রজন্মের ফুটবলের প্রতি আকর্ষণ বাড়বে। ভারতবর্ষের কোনও স্কুল – কলেজের মাঠ থাকবে না , যেখানে আসবে আমাদের তরুণদের ফুটবল খেলতে দেখা যাবে না। আসুন , সমগ্র বিশ্ব যখন ভারতের মাটিতে খেলতে আসছে , আমরাও এই খেলাটাকে আমাদের জীবনের অংশ করে নিই। আমার প্রিয় দেশবাসী , নবরাত্রির উৎসব চলছে। মা দুর্গার বোধনের সময়। সমগ্র পরিবেশ শুভ পবিত্র সুগন্ধে ভরে উঠেছে। চারিদিকে এক আধ্যত্মিকতার পরিবেশ , উৎসবের পরিবেশ , ভক্তির পরিবেশ , এই সব কিছুই শক্তির আরাধনার উৎসব হিসেবে পালিত হয়। একে আমরা শারদীয় – নবরাত্রি রূপে জানি। এখন থেকেই শরৎ ঋতুর আরম্ভ হয়। নবরাত্রির এই শুভ উৎসব উপলক্ষে আমি দেশবাসীকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই , মাতৃ শক্তির কাছে প্রার্থনা করি , দেশের সাধারণ মানুষের আশা – আকাঙ্ক্ষা পূরণের উদ্দেশে আমাদের দেশ সাফল্যের নতুন শিখরে পৌঁছে যাক । প্রত্যেক চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার ক্ষমতা দেশের আসুক। আপনাদের সবাইকে অনেক অনেক শুভকামনা। উৎসব পালন করুন , উৎসাহকেও উজ্জীবিত করুন। অনেক অনেক ধন্যবাদ । প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী চেটি চাঁদ উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছাজানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “পবিত্র চেটি চাঁদ উপলক্ষে সিন্ধি সম্প্রদায়কেআমার শুভেচ্ছা। ঐ রাজ্যের বালিয়ায় ‘প্রধানমন্ত্রী উজ্জ্বলা যোজনা’র সূচনা করবেন তিনি। এই কর্মসূচির আওতায় আগামী তিন বছরেবিনামূল্যে এলপিজি সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হবেদারিদ্রসীমার নিচে বসবাসকারী পরিবারগুলির ৫ কোটি মহিলা সদস্যের কাছে। উত্তরপ্রদেশ সফরকালে প্রধানমন্ত্রী তাঁর নির্বাচন কেন্দ্র বারাণসীতেও যাবেন। সেখানে তিনি ই-রিক্সা বন্টন করবেন দরিদ্র মানুষের কল্যাণে। সাংস্কৃতিক পঠনপাঠন ও গবেষণাকেন্দ্র ‘জ্ঞান প্রভা’তেও যাবেন তিনি। বারাণসীর বিশিষ্ট নাগরিকদের সঙ্গে এক বৈঠকেও মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী। চুক্তির শর্তঅনুসারে, এডিএনওসি কর্ণাটকের ম্যাঙ্গালোরে অবস্থিত আইএসপিআরএল-এর মজুত ভাণ্ডারে৫,৮৬০,০০০ মিলিয়ন ব্যারেলে অশোধিত তেল মজুত করবে। মজুত এই তেলের কিছু অংশবাণিজ্যিক উদ্দেশ্যে ব্যবহার করবে এডিএনওসি কিন্তু অধিকাংশ তেলই ব্যবহার করা হবেশুধুমাত্র কৌশলগত লক্ষ্য পূরণের উদ্দেশ্যে। এই চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে বিশেষভাবেবৃদ্ধি পাবে ভারতের জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়টি। প্রসঙ্গতউল্লেখ্য, ভারত ও সংযুক্ত আরব আমীরশাহী হ’ল পরস্পরের কৌশলগত অংশীদার। গণিত, কম্পিউটার ও বৈজ্ঞানিক পদ্ধতি, পদার্থ বিদ্যা ও মহাকাশ বিজ্ঞান, রসায়ন ও বস্তুবিজ্ঞান, জীববিদ্যা ও জীব বিজ্ঞান, চিকিৎসার জন্য প্রাথমিক গবেষণা, কৃষি বিজ্ঞান, ভূ-বিজ্ঞান এবং স্থাপত্য তথা গঠন ও নির্মাণ বিজ্ঞানের ক্ষেত্রে এই প্রতিযোগিতামূলক গবেষণার উল্লেখ রয়েছে ঐ চুক্তিটিতে। আর্থিক সহায়তা তথা অনুদানের জন্য গবেষণা প্রকল্পগুলি চিহ্নিত করার ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত নেবে ভারতের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি দপ্তর এবং রাশিয়ার বিজ্ঞান ফেডারেশন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার “প্রশাসনের পক্ষে কার্যকর এবং সময়ানুযায়ী রূপায়ন”-এর জন্য আই সি টি ভিত্তিক বহুমাত্রিক মঞ্চ “প্রগতি”-র মাধ্যমে তাঁর নবম মতামত বিনিময় অনুষ্ঠানে পৌরহিত্য করেছেন। এদিন পর্যালোচনাকালে প্রধানমন্ত্রী মহারাষ্ট্র, হরিয়ানা, উত্তরপ্রদেশ, হিমাচল প্রদেশ, ঝাড়খন্ড, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, ছত্তিশগড় এবং রাজস্থান সহ বহু রাজ্যে ছড়িয়ে থাকা সড়ক, রেলপথ, কয়লা, শক্তি ও পুনর্নবীকরণ ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোগত প্রকল্পগুলির অগ্রগতি পর্যালোচনা করেন। এদিন উল্লেখযোগ্য যেসব প্রকল্পের বিষয়ে পর্যালোচনা করা হয়েছে তার মধ্যে রয়েছে ‘মুম্বাই ট্রান্স-হারবার লিঙ্ক’, ‘দিল্লি-মুম্বাই ইন্ডাস্ট্রিয়াল করিডোর’ এবং এলাহাবাদ থেকে হলদিয়া পর্যন্ত ‘জল মার্গ বিকাশ প্রকল্প’। পারস্পরিক সহায়তা এবং সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে, এমন চিহ্নিত বিষয়গুলির মোকাবিলার ক্ষেত্রেও এই মউ কার্যকর ভূমিকা নেবে। দু’দেশের মধ্যে প্রাতিষ্ঠানিক মতবিনিময়ের ক্ষেত্রেও এই মউ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিদেশস্থিত জাতীয় তেল সংস্থাগুলি কর্তৃক কর্ণাটকের পাদুরে পেট্রোলিয়াম ভাণ্ডার পূরণ করার সিদ্ধান্ত অনুমোদিত হয়েছে। সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে এই ধরণের কৌশলগত পেট্রোল ভাণ্ডার পূরণের সিদ্ধান্তের মাধ্যমে কেন্দ্রের বাজেট সহায়তা কমবে বলে মনে করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বাল্মীকি জয়ন্তীতেমহর্ষি বাল্মীকির মহান আদর্শ ও চিন্তাধারার কথা স্মরণ করলেন। একবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “বাল্মীকি জয়ন্তীতেমহর্ষি বাল্মীকির মহান আদর্শ ও পবিত্র চিন্তাধারার কথা মনে হচ্ছে। আপনাদের সকলের সঙ্গে এইভাবে আবার যুক্ত হওয়ার ঘটনা নিঃসন্দেহে একটি আনন্দের মুহূর্ত। যৌথউদ্যোগগুলির সফল রূপায়ণের ঘটনা প্রিয় বন্ধুদের সঙ্গে মিলিতভাবে উদযাপনের যে আনন্দআমরা উপভোগ করি, অন্য কোন ঘটনা থেকে ততটা আনন্দ আমরা পাই না। বিগত কয়েক মাস ধরেবিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ ঘটনার সাক্ষী থাকতে পেরে আপনি এবং আমি উভয়েই বিশেষ ভাগ্যবান। গতবছর ডিসেম্বরে আফগান সংসদের উদ্বোধনকালে আপনি এবং আফগান জনসাধারণ ছিলেন আমারসঙ্গেই। আধুনিকআফগানিস্তান গঠনের মূল ভিতটিকে শক্তিশালী করে তোলার লক্ষ্যে ঐ উদ্বোধন ছিল আমাদেরযৌথ অঙ্গীকারের এক প্রতীকি ঘটনা । এ বছর মে মাসে স্বাক্ষরিত ভারত-আফগানিস্তান-ইরানসংযোগ করিডর চুক্তিটি হল আমাদের পারস্পরিক অংশীদারিত্বের এক দিকচিহ্ন বিশেষ। সালমাবাঁধ আফগানিস্তানের হেরাট অঞ্চলের কৃষি ও অর্থনীতিতে শুধুমাত্র প্রাণসঞ্চারই করবেনা, একইসঙ্গে আফগানিস্তানের সামগ্রিক বিকাশ ও উন্নয়নের ক্ষেত্রে তা হয়ে উঠবে একটিস্থায়ী ও শক্তিশালী স্তম্ভ বিশেষ। ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে স্টর প্যালেসের উদ্বোধন আজ এক সম্পূর্ণ পৃথক ঘটনা হলেও অনেক দিকথেকেই তা আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে একটি মৌলিক মাত্রা এনে দিয়েছে। আমারএকথা বলার কারণ হল, আফগানিস্তানের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যের একটি মূল্যবান দিক এই ঘটনারমধ্য দিয়ে বাস্তবের মাটিতে মূর্ত হয়ে উঠেছে। স্টর প্যালেস হল বহু গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ঘটনার প্রেক্ষাপট। আফগানিস্তানে হিংসা ছাড়া অন্য কিছু যারা বোঝে না, নতুন করে গড়ে তোলা স্টর প্যালেস আফগানিস্তানের গৌরবময় সমৃদ্ধঐতিহ্যের কথা তাদের স্মরণ করিয়ে দেয়। আফগানিস্তানহল আমাদের এক ঘনিষ্ঠ বন্ধু। আমাদের দু’দেশের সমাজ ও জনসাধারণের মধ্যে রয়েছে এক সুপ্রাচীনসম্পর্ক ও যোগাযোগের বন্ধন । এইপরিস্থিতিতে আপনাদের মতো একটি গর্বিত জাতিকে যখন সম্মুখীন হতে হয় মদতপুষ্ট হিংসা ওসন্ত্রাসের চ্যালেঞ্জের, তখন তা আমাদের ব্যথিত করে। আফগানিস্তানেরজনসাধারণকে আমি এই মর্মে আশ্বাস দিতে চাই যে : · এক সমৃদ্ধ আফগানিস্তান গড়ে তোলার কাজে; এবং · আপনাদের সমাজে শান্তি, নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতাফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে আপনাদের প্রচেষ্টায় সহযোগিতা করতে ১২৫ কোটি ভারতীয় রয়েছেনআপনাদের পাশেই। আফগানিস্তানেরসঙ্গে আমাদের অংশীদারিত্বের সঙ্কল্প এবং বন্ধুত্বের শক্তি থাকবে চিরকালই অটুট ওঅমলিন । পারস্পরিকসহযোগিতা প্রচেষ্টার ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের সঙ্কল্পের সাক্ষ্য বহন করছে আজকের এইঘটনাটি। প্রত্যেকআফগানিস্তানবাসীর উত্তরোত্তর সমৃদ্ধি এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির সাফল্যের মধ্য দিয়েআপনাদের সমাজ ব্যবস্থার বিকাশই আমাদের কাম্য। এইকাজ যতই কঠিন হোক না কেন, সকল আফগানিস্তানবাসীর উজ্জ্বল ভবিষ্যতের লক্ষ্যে ভারত সহযোগিতারভিত্তিতে কাজ করে যাবে আপনাদের সঙ্গে । পরিশেষে,ভারতীয় দূতাবাস ও কনস্যুলেটগুলিকে সুরক্ষাদান এবং আফগানিস্তানে কর্মরত ভারতীয়বিশেষজ্ঞদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা নিশ্চিত করার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই আপনাদের। আমাদেরআফগান ভাইদের আত্মোৎসর্গের কথা বিস্মৃত হওয়ার নয়। আজএইভাবে আপনার উপস্থিতির জন্য আরও একবার ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। ব্যক্তিগতভাবেআবার আপনার সঙ্গে খুব তাড়াতাড়ি মিলিত হতে পারব বলে আশা করি। নবসাজেসজ্জিত স্টর প্যালেস কোন একদিন পরিদর্শন করার সুযোগও আমার ঘটবে এই আশায় রইলাম। ধন্যবাদ।আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে ছিটমহল বিনিময়ের পরবর্তী পর্যায়ে বাংলাদেশী ছিটমহল এবং কুচবিহার জেলার পরিকাঠামো উন্নয়নের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে।প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার এই বৈঠকে ছিটমহলের পুনর্বাসন সংক্রান্ত প্যাকেজের বিষয়টিতেও অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ৩-৫ বছরের সময়সীমার মধ্যে পরিকাঠামো ও পুনর্বাসনের কাজ রূপায়িত হবে রাজ্য সরকার বা অনুমোদিত কোনও এজেন্সির মাধ্যমে।এজন্য রাজ্য সরকারকে অনুদান হিসেবে আর্থিক মঞ্জুরি দেবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। উল্লেখ্য, বাংলাদেশী ছিটমহল এবং কুচবিহার জেলার জন্য পরিকাঠামো ও পুনর্বাসন সংক্রান্ত দুটি প্রস্তাব পাঠানো হয়েছিল পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বহুমুখী প্রতিভাসম্পন্ন অভিনেতা শশীকাপুরের জীবনাবসানে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন : “শশী কাপুরের বহুমুখী প্রতিভাতাঁর অভিনীত চলচ্চিত্র ও নাটকে প্রকাশ পেয়েছে। তাঁর অসাধারণ অভিনয় পরবর্তী প্রজন্মমনে রাখবে। তাঁর প্রয়াণে আমি শোকাহত। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ এবং ‘স্মার্ট সিটি’ কর্মসূচিতে পারস্পরিক সহযোগিতা্র প্রসার সহ অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিভিন্ন ক্ষেত্রগুলি সম্পর্কে তাঁরা আলাপ-আলোচনা করেন। রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ সংস্থায় ভারতের সদস্যপদকে সমর্থন জানানোর জন্য তুরস্কের প্রেসিডেন্টকে আবেদন জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাষ্ট্রসংঘের সংস্কার, পরমাণু শক্তিকে অসামরিক কাজে ব্যবহার এবং মহাকাশ ও কৃষি গবেষণা সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত বিষয়গুলিও তাঁদের আলোচ্যসূচিতে স্থান পায়। রেলের আধুনিকীকরণ, প্রতিরক্ষা উৎপাদন, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন এবং নৌ-নিরাপত্তা সম্পর্কেও তাঁরা মতবিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিএবং আবাসন সংক্রান্ত মূল পরিকাঠামোগুলির অগ্রগতির বিষয়টি পর্যালোচনা করেন। প্রায়তিন ঘন্টার এই পর্যালোচনা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, নিতি আয়োগএবং কেন্দ্রীয় সরকারের পরিকাঠামো সংক্রান্ত মন্ত্রকগুলির শীর্ষস্থানীয়কর্তা-ব্যক্তিরা। বৈঠকে নিতিআয়োগের সিইও-র উপস্থাপনাকালে জানা যায় যে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি উৎপাদন, সুলভও গ্রামীণ আবাসন, এলইডি বাল্বের উৎপাদন ও যোগান সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে ইতিমধ্যেইউল্লেখযোগ্য অগ্রগতি পরিলক্ষিত হয়েছে। সৌর জ্বালানি ক্ষেত্রে ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে ৮১ শতাংশ যাকিনা, এযাবৎকালের মধ্যে সর্বোচ্চ। সৌর ও বায়বীয় বিদ্যুতের মাশুল হার ঘন্টায়কিলোওয়াট প্রতি নেমে এসেছে ৪ টাকায়। সৌর নগরী গড়ে তোলার আহ্বান জানিয়েপ্রধানমন্ত্রী বলেন যে এই ধরনের শহরগুলিতে বিদ্যুতের চাহিদা মেটানো হবে শুধুমাত্রসৌর জ্বালানির সাহায্যে। প্রধানমন্ত্রীআবাস যোজনার আওতায় দেশের গ্রামাঞ্চলে উল্লেখযোগ্য অগ্রগতির একটি সার্বিক চিত্রএদিন তুলে ধরা হয় পর্যালোচনা বৈঠকে। এই কর্মসূচি রূপায়ণে তথ্যপ্রযুক্তি এবং মহাকাশগবেষণাভিত্তিক ব্যবস্থাগুলিকে বিশেষভাবে কাজে লাগানো হচ্ছে বলে জানা যায়। ২০১৬-১৭ অর্থবছরে ৩২ লক্ষেরও বেশি গ্রামীণ বাসস্থান গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। এই কর্মসূচির সঙ্গেযুক্ত গ্রামীণ কারিগরদের দক্ষতা ও প্রশিক্ষণ সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন প্রধানমন্ত্রী। তথ্য প্রযুক্তি-ভিত্তিক ‘প্রগতি’র মঞ্চে আজ ২৪তম পর্যায়ের এক আলোচনা বৈঠকেমিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এর আগে ‘প্রগতি’র মঞ্চে প্রথম যে ২৩টি আলোচনা বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছিল, সেখানে৯.৪৬ লক্ষ কোটি টাকা বিনিয়োগের ২০৮টি প্রকল্প ও কর্মসূচি রূপায়ণের অগ্রগতিরবিষয়গুলি পর্যালোচনা করা হয়। এছাড়াও, ১৭টি বিভিন্ন ক্ষেত্রের কাজকর্ম সম্পর্কেজনসাধারণের ক্ষোভ ও অভিযোগের নিরসন ও নিষ্পত্তির বিষয়টিও প্রধানমন্ত্রী খতিয়েদেখেছিলেন ঐ বৈঠকগুলিতে। আজ ‘প্রগতি’র মঞ্চে কেদারনাথের পুনর্নির্মাণ ও পুনর্গঠন কর্মসূচির অগ্রগতিরবিষয়টি পর্যালোচনা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ড্রোনের সাহায্যে তোলা ছবির মাধ্যমে এসম্পর্কে একটি উপস্থাপনা পেশ করা হয় উত্তরাখন্ড সরকারের পক্ষ থেকে। দিল্লি পুলিশের কাজকর্ম সম্পর্কে যে সমস্ত অভিযোগ পাওয়া গেছে, তার নিরসনেকি কি ব্যবস্থা এ পর্যন্ত গ্রহণ করা হয়েছে, সে সম্পর্কেও খোঁজখবর নেনপ্রধানমন্ত্রী। তিনি জোর দেন ক্ষোভ ও অভিযোগ নিরসনের ব্যবস্থাকে আরও উন্নত করেতোলার ওপর। ৪০ হাজারকোটি টাকারও বেশি বিনিয়োগে রূপায়িত হচ্ছে এই সমস্ত প্রকল্প। নতুন ভারত যুবসম্মেলনে উপস্থিত সকলে প্রধানমন্ত্রীকে উচ্ছ্বসিত অভ্যর্থনা দেন। শ্রী মোদী বলেছেন, দেশ বদলাচ্ছে এবং এটা সম্ভব হয়েছে, কারণ সাধারণ মানুষ আরও উন্নত ভারত গড়ার জন্য নিজেদের পরিবর্তনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। সুরাটে আজ জাতীয় যুবসম্মেলনে ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আগে মানুষের মনোভাব ছিল কোনও কিছুই হবে না বা কিছুই বদলাবে না। অবশ্য, এই মানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে এবং তা স্পষ্ট দেখাও যাচ্ছে। তিনি বলেন, “একটা সময় ছিল, যখন মানুষের মনে ধারণা ছিল যে, কিছুই বদলাতে পারে না। ভারতের সক্ষমতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “জঙ্গিরা মুম্বাই আক্রমণ করেছিল, তারপর কি হয়েছে? আমাদের সরকারের শাসনকালে উরি জঙ্গিহানা হয়েছে, এরপর কি হয়েছে? এটাই পরিবর্তন। শ্রী মোদী বলেন, কালো টাকার বিরুদ্ধে সরকারের অভিযান এক সাহসী ও বিচক্ষণ পদক্ষেপ ছিল। তিনি আরও বলেন, “ভারতীয়দের জনমানসিকতায় পরিবর্তন এসেছে এবং এই মানসিকতাই দেশকে বদলাবে বলে আমার পূর্ণ আস্থা রয়েছে। এই দেশ যে কোনও ব্যক্তির তুলনায় অনেক বড়। সেখানে তিনি অত্যাধুনিক রাসিলাবেন সেবন্তীলাল ভেনাস হাসপাতাল জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। কুড়ানকুলাম এনপিপি’র (কেকে-৫ এবং কেকে-৬) তৃতীয় পর্যায়ের নির্মাণ সম্পর্কিত সাধারণ কাঠামো চুক্তি। শ্রী সতীশ কুমার শর্মা, চেয়ারম্যান, এনপিসিআইএল মিঃ অ্যালেক্সি লিখাচেভ, সিইও, রোসাটম ফেডারেল সার্ভিস ফর ইনটেলেকচ্যুয়াল প্রপার্টি (রোসপেটেন্ট) এবং ভারতের সিএসআইআর-এর মধ্যে টিকেডিএল-এ রোসপেটেন্ট বিশেষজ্ঞদের কাজকর্ম সম্পর্কিত চুক্তি। মিঃ গ্রিগরি ইভলিয়েভ, রোসপেটেন্টের প্রধান নাগপুর-সেকেন্দ্রাবাদ সেকশনে উচ্চ গতির রেল পরিষেবা চালু করা র জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতিপর্ব সম্পর্কিত ভারতের রেল মন্ত্রক এবং রাশিয়ান রেলওয়েজের জেএসসি’র মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি। ওলেগ বেলোসেরভ, প্রেসিডেন্ট, রাশিয়ান রেলওয়েজ ভারতের মূল্যবান রত্ন ও অলঙ্কার রপ্তানি বিকাশ পরিষদ এবং রাশিয়ার সরকারি জয়েন্ট স্টক কোম্পানি আলরোসা’র মধ্যে স্বাক্ষরিত মউ। শ্রী প্রবীণ শঙ্কর পান্ডা, চেয়ারম্যান, রত্ন ও অলঙ্কার রপ্তানি বিকাশ পরিষদ (জিজেইপিসি) উন্নত ধরনের নতুন নতুন প্রতিষেধক টিকা চালু করার লক্ষ্যেএটি হল এক আন্তর্জাতিক মানের প্রতিষ্ঠান। যে কোনও সময়ে এই দ্বিপাক্ষিক চুক্তিটিতে সংশোধন নিয়ে আসা যাবে দু’দেশের আলাপ-আলোচনা ও সম্মতির ভিত্তিতে। “সালউইননদীর গতিপথের ওপর ১৮৪১ সালে তৈরি একটি মানচিত্রের প্রতিলিপি আমি উপহার দিয়েছিমায়ানমারের প্রেসিডেন্ট ইউ তিন কিয়াও-কে। নাবিকদের স্বার্থরক্ষায় দু ’ দেশের শংসাপত্রগুলিকে পারস্পরিকস্বীকৃতিদানের সিদ্ধান্ত নিয়েছে ভারত ও কোরিয়া। এই লক্ষ্যে শংসাপত্রের স্বীকৃতিদানসম্পর্কিত এক লিখিত ঘোষণায় স্বাক্ষরের প্রস্তাব আজ অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল নতুন দিল্লির ইন্দিরা গান্ধীইন্ডোর স্টেডিয়ামে প্রথম খেলো ইন্ডিয়া বিদ্যালয় ক্রীড়ার সূচনা করবেন। উচ্চ পর্যায়ের এক কমিটি প্রতিভাসম্পন্ন খেলোয়াড়দের বেছে নেবে নানাধরনেরখেলাধূলার ক্ষেত্রে এবং তাদের প্রত্যেককে বছরে ৫ লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তাদেওয়া হবে আগামী ৮ বছরের জন্য। খেলো ইন্ডিয়া বিদ্যালয় ক্রীড়া অনুষ্ঠনিত হবে ৩১ জানুয়ারি থেকে ৮ ফেব্রুয়ারিপর্যন্ত। ১৯৯টিস্বর্ণ, ১৯৯টি রৌপ্য এবং ২৭৫টি ব্রোঞ্জ পদক দেওয়া হবে প্রথম তিন স্থানাধিকারীকে। সাওনি যোজনার আওতায় বৃহস্পতিবার রাজকোটের অদূরে অজি বাঁধের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সম্ভব হয়েছেবেশ কিছু ইতিবাচক পরিবর্তনও। তবে একইসঙ্গে, জল সংরক্ষণের লক্ষ্যেও সকলরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন কারণ তা সংশ্লিষ্ট সকলেরই এক দায়িত্ব বিশেষ। এই সমস্ত বিষয়গুলি সমাজের দরিদ্র ও বঞ্চিত শ্রেণীর মানুষকে অর্থ-ব্যবস্থার সুফল পৌঁছে দিতে সাহায্য করে। পশ্চিমী দেশগুলির তুলনায় পূবের দেশগুলিতে শক্তির ক্রমবর্ধমান চাহিদার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, খনিজ তেল বিপ্লবের পর মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহৎ তৈল ও গ্যাস উৎপাদনকারী দেশ হয়ে উঠেছিল। সুস্থায়ী উন্নয়নের উদ্দেশ্যগুলি দ্রুত অর্জনের ক্ষেত্রে স্বল্প মূল্যে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, প্রযুক্তি ও ডিজিটাল পদ্ধতির প্রয়োগের মধ্যে যথাযথ ভারসাম্য আনা প্রয়োজন বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, শক্তি উৎপাদক ও গ্রাহক উভয়ের স্বার্থ বজায় রাখতে শক্তি সম্পদের ন্যায্য মূল্য নির্ধারণ বর্তমান সময়ের চাহিদা। তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের জন্য এক স্বচ্ছ ও নমনীয় বাজার ব্যবস্থা গড়ে তোলার লক্ষ্যে সংশ্লিষ্ট সবপক্ষকে আরও প্রয়াসী হতে হবে। এভাবেই মানবজাতির শক্তির চাহিদা সম্পূর্ণ মেটানো সম্ভব বলে তিনি মন্তব্য করেন। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যাগুলি মোকাবিলায় বিশ্ব সম্প্রদায়কে একজোট হওয়ার বার্তা স্মরণ করিয়ে দিয়ে শ্রী মোদী বলেন, প্যারিসে আয়োজিত কনফারেন্স অফ পার্টিস বা সিওপি – ২১ – এ যে লক্ষ্যমাত্রা স্থির হয়েছে, তা অর্জন করা সম্ভব। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় ভারত তার অঙ্গীকারগুলি পূরণের লক্ষ্যে দ্রুত অগ্রসর হচ্ছে। দেশীয় শিল্প সংস্থাগুলি তাদের কর্মদক্ষতা ও নিরাপত্তা বাড়াতে এবং খরচ কমাতে আধুনিক প্রযুক্তির সাহায্য নিচ্ছে বলেও প্রধানমন্ত্রী জানান। এই উদ্দেশ্য পূরণে কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক নীতি প্রণয়ন ও তার রূপায়ণ করছে। সরকারের এই উদ্যোগগুলির ফলাফল এখন পাওয়া যাচ্ছে। বর্তমানে ভারত বিশ্বের চতুর্থ বৃহত্তম তৈল পরিশোধন ক্ষমতাসম্পন্ন দেশ হয়ে উঠেছে। দেশে তৈল পরিশোধনের ক্ষমতা ২০৩০ সাল নাগাদ আরও প্রায় ২০ কোটি মেট্রিক টন বাড়বে। ভারত গ্যাস-ভিত্তিক অর্থনীতি হয়ে ওঠার লক্ষ্যে দ্রুত এগিয়ে চলেছে বলে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে ১৬ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি গ্যাস পাইপ লাইন বসানো হয়েছে। এমনকি, আরও ১১ হাজার কিলোমিটার দীর্ঘ গ্যাস পাইপ লাইন বসানোর কাজ চলছে। তিনি আরও জানান, দশম পর্যায়ে ৪০০টি জেলায় নগর-কেন্দ্রিক গ্যাস বন্টন নিলাম প্রক্রিয়া ইতিমধ্যেই শেষ হয়েছে। এর ফলে, দেশের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশের কাছে নগর-কেন্দ্রিক গ্যাস বন্টন ব্যবস্থার সুবিধা পৌঁছে যাবে। পেট্রোটেক সম্মেলনের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত এ ধরণের সম্মেলনে সমগ্র শক্তি ক্ষেত্র যে সকল সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকে, তার সমাধানসূত্র খুঁজে বের করার ব্যাপারে এক মঞ্চ হিসাবে কাজ করে। ও পি মেহরার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গভীর শোক প্রকাশ করেছেন। এক শোকবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “সাহসী ও বিশিষ্ট দেশপ্রেমী ও পি মেহরার মৃত্যুতে আমি ব্যথিত হয়েছি। দেশের প্রতি অবদানের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। ও পি মেহরা প্রথমে বিমান বাহিনীতে এবং পরে ক্রীড়া প্রশাসন ও কয়েকটি রাজ্যের রাজ্যপাল হিসেবে বহু বছর দায়িত্ব পালন করেছেন। ওম প্রকাশ মেহরার পরিবার-পরিজনকে আমার সমবেদনা জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভারতীয় ডিফেন্স অ্যাকাউন্টস্‌সার্ভিস (আইডিএএস)-এর ক্যাডার রিভিউ অনুমোদন করল। এরপরেই অনুষ্ঠিত হয়েছে জলবায়ু সম্পর্কিত ‘সি ও পি-২১’ বৈঠক যেখানে মানুষের জীবনশৈলীর পরিবর্তনের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছে ভারত। আমাদের অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার ধারা যেভাবে ক্রমরূপান্তরের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলে, সেই একইভাবে পরিবর্তনশীলতার মধ্য দিয়ে এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে আমাদের জীবনের স্রোতোধারাকে। ভোগবাদী জীবন দর্শন পরিবেশগত সমস্যার জন্য অনেকাংশে দায়ী বলে মনে করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। যা কিছু নিরন্তর নয়, অক্ষুণ্ণ নয়, তাকে উন্নয়ন আখ্যা দিতে অস্বীকার করেন প্রধানমন্ত্রী। উন্নয়ন প্রক্রিয়াকে যদি নিরন্তর ও অন্তর্ভুক্তিমূলক করে তোলা না যায়, তাহলে কখনই এই লক্ষ্য বাস্তবায়িত হয়ে উঠতে পারে না। ভবিষ্যৎ প্রজন্মের চাহিদা পূরণের বিষয়টির সঙ্গে আপোষ করে চলাকে ‘উন্নয়ন’ আখ্যা দেওয়া যায় না বলেই মনে করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ভারত সবসময়ই নিরন্তর উন্নয়নশীলতায় বিশ্বাসী। প্রকৃতির নিয়ম আমাদের কাছে মহামূল্যবান। আমরা যদি তা মেনে চলি তাহলে মানুষের তৈরি অনেক আইনকানুনেরই কোন প্রয়োজন হয় না। আধুনিক পরিভাষায় ‘অংশীদার’ বলে একটি কথা চালু রয়েছে। একটি পথ বা উপায় নিরন্তর হয়ে উঠতে পারে তখনই যখন সকল অংশীদারই তা থেকে উপকৃত হন। এটি হল এক অন্তর্নিহিত বিষয়। যারা অন্য কোন উদ্দেশ্য নিয়ে কাজে এগিয়ে আসতে চান, তাদের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্য নয়। কারণ, প্রকৃতি অকৃত্রিম, অকলুষিত। তাই, সদিচ্ছা ও সৎ অভিপ্রায়ই প্রকৃতির নিয়মকে অটুট ও অক্ষুণ্ণ রাখতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতি ও সহাবস্থানের ঐতিহ্যে আমরা বিশ্বাসী। ভারতীয় পূরাণ অনুযায়ী, অধিকাংশ দেব-দেবীর সঙ্গেই যুক্ত রয়েছে কোন না কোন প্রাণী অথবা বৃক্ষ। এই কথা যদি আমরা স্মরণে রাখি, তা অনুসরণ করি এবং আমাদের কাজকর্মের মধ্য দিয়ে প্রতিফলিত করে তুলি তাহলে নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যে ভারত এক নেতৃত্বদানের ভূমিকায় অবতীর্ণ হতে পারে। যোগাভ্যাসের লক্ষ্য হল আমাদের জাগতিক কামনা-বাসনা এবং সন্তুষ্টি বিধানের মধ্যে ভারসাম্য রক্ষা করা যাতে পরিমিত অথচ নিরন্তর জীবনশৈলীর মধ্য দিয়ে আমরা ক্রমশ এগিয়ে যেতে পারি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘জাতির জনক’ মহাত্মা গান্ধী বলতেন যে প্রাকৃতিক সম্পদের অছি হিসেবে যথেষ্ট সাবধানতার সঙ্গে আমাদের তা ব্যবহার করা উচিত। আমাদের নৈতিক দায়িত্বই হল ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে আমাদের এই বসুন্ধরাকে এক সুস্থ ও প্রাকৃতিক পরিবেশের মধ্য দিয়ে সাজিয়ে তোলা। আর এ সমস্ত কিছুই আমরা করতে ইচ্ছুক নিরন্তর প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে। আমাদের এই উন্নয়নের লক্ষ্যে পৌঁছনোর ক্ষেত্রে শক্তি তথা জ্বালানির লক্ষ্য পূরণআরও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। আর এই কারণেই আমাদের মূল চ্যালেঞ্জগুলির অন্যতম হল পুনর্নবীকরণ জ্বালানি শক্তিকে ১৭৫ গিগাওয়াটে উন্নীত করা। এই উদ্দেশ্য পূরণে এখনও পর্যন্ত আমরা সাফল্যের সঙ্গেই এগিয়ে চলেছি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘স্বচ্ছ ভারত’ এবং ‘গঙ্গা শোধন’ আমাদের আরও দুটি উল্লেখযোগ্য পদক্ষেপ। দেশের কোটি কোটি মানুষ সাগ্রহে এগিয়ে এসেছেন পরিচ্ছন্নতা রক্ষার অভিযানে। আমাদের এই সমবেত প্রচেষ্টাকে কিভাবে আরও সফল করে তোলা যায় সে কথা চিন্তাভাবনা করতে হবে সকলকেই। পৃথিবীর অন্যান্য সভ্য দেশও এই ধরনের সমস্যা সাফল্যের সঙ্গে অতিক্রম করে আসতে পেরেছে। আমাদের সমবেত প্রচেষ্টার মধ্য দিয়ে আমরাও যে এব্যাপারে সফল হয়ে উঠব এই বিশ্বাস আমার রয়েছে। উন্নয়নের প্রচেষ্টায় যাবতীয় দ্বিধা-দ্বন্দ্ব, মতবিরোধ আমাদের কাটিয়ে উঠতে হবে। কারণ আমাদের সংস্কৃতি আমাদের শিক্ষাও দিয়েছে ব্যক্তি ও সমষ্টির মধ্যে সমন্বয়ের। যদি আমরা সকলে এক ও অভিন্ন হয়ে উঠতে পারি তাহলে স্বার্থেস্বার্থেদ্বন্দ্ব ও সংঘাতের অবসান ঘটবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়টিকে আমাদের সরকার একটি সমস্যা হিসেবে নয়, একটি সুযোগ হিসেবেই গ্রহণ করতে ইচ্ছুক। একই কথা আমি বলতে চাই উৎপাদন শিল্পের ক্ষেত্রেওযাতেপ্রতিটি উৎপাদিত পণ্য হয়ে উঠতে পারে ত্রুটিহীন এবং পরিবেশ রক্ষার কাজে অনুকূল। ‘কনভিনিয়েন্ট অ্যাকশন’ নামে তাঁর একটি গ্রন্থে এই সমস্ত চিন্তাভাবনারই প্রতিফলন ঘটেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। আমাদের একথা স্বীকার করতে হবে যে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য সকলেই সমানভাবে দায়ী নয়। এখনও অনেকেই রয়েছেন যাঁরা আধুনিক সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। আর তাঁরাই জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রতিক্রিয়ায় ক্ষতি স্বীকার করেন সবথেকে বেশি। খরা, বন্যা, তাপপ্রবাহ, সামুদ্রিক জলোচ্ছ্বাস, ঘূর্ণিঝড় ইত্যাদির প্রথম শিকার হয়ে পড়েন তাঁরাই। অর্থাৎ, দরিদ্র, বঞ্চিত এবং প্রান্তিক গোষ্ঠীর মানুষই প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের প্রথম শিকার। কারণ, এই ধরনের বিপর্যয় মোকাবিলার মতো সহায়সম্পদ থেকে বঞ্চিত তাঁরা। আর এই কারণেই জলবায়ুর প্রতি সুবিচারের দিকে আমি সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করতে চাই। একটি দেশের ক্ষেত্রে যে নিয়ম, কানুন, প্রথা কিংবা নীতি প্রচলিত রয়েছে তা একইভাবে প্রয়োগ করা যায় না অন্যকোন দেশের ক্ষেত্রে। প্রত্যেকটি দেশেরই রয়েছে নিজস্ব কিছু চ্যালেঞ্জ যা তাদের মোকাবিলা করতে হয় নিজেদের মতো করেই। একই নিয়মনীতি যদি আমরা প্রয়োগ করতে চাই সকল দেশের ক্ষেত্রেই, তাহলে কাজের কাজ কিছুই হবে না। শ্রী মোদী বলেন, উন্নয়নকে নিরন্তর করে তোলা আমাদের এক দায়িত্ব বিশেষ। আমি বিশ্বাস করি যে সমবেতভাবে এই দায়িত্ব পালনে সফল আমরা হবই। “ ধরিত্রী দিবস হলমাতা বসুন্ধরার প্রতি আমাদের কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের দিন। এটি হল এমন একটি দিন যখনআমাদের এই গ্রহকে পরিচ্ছন্ন ও কলুষমুক্ত রাখার লক্ষ্যে আমরা আমাদের সংকল্পেরপুনরুচ্চারণ করি। ” ভবিষ্য ৎ প্রজন্মগুলির স্বার্থেই এ পথ আমাদের অনুসরণ করে যেতে হবে। একটি উন্নত মানের বাজেটউপহার দেওয়ার জন্যে দেশের অর্থমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় অরুণ জেটলিকে অনেক অনেক শুভেচ্ছাজানাই। এই বাজেট হাইওয়ে নির্মাণের পাশাপাশি আইওয়েবৃদ্ধির অনুকূল, ডালের দাম থেকে শুরু করে Data – র স্পীড, রেলের আধুনিকীকরণ থেকে সরল অর্থনৈতিক বৃদ্ধির লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণ,শিক্ষা থেকে স্বাস্থ্য, শিল্পপতি থেকে শিল্পোন্নয়ন, Textile manufacturing থেকে Tax deduction প্রত্যেক ক্ষেত্রে সাধারণ মানুষের স্বপ্ন সফলকরার প্রয়াস এই বাজেটে স্পষ্ট প্রতীয়মান। এই ঐতিহাসিক বাজেটের জন্য অর্থমন্ত্রীরপাশাপাশি তাঁর টিমের প্রত্যেক সদস্যকে অভিনন্দন জানাতে হয়। রেল এখন আরও ভালভাবে দেশের সামগ্রিক পরিবহণ ব্যবস্থার নানা প্রয়োজনসাধনের কাজে লাগবে। ডিজিটাল অর্থনীতি কে একটি মিশন হিসেবেগ্রহণ করে ২০১৭-১৮’তে দু’হাজার পাঁচশো কোটি টাকা ডিজিটাল লেনদেন খাতে বরাদ্দ করাহয়েছে। আমাদের অর্থমন্ত্রী কর প্রক্রিয়ায় সংস্কার ও সংশোধনের মাধ্যমে মধ্যবিত্তদেরস্বস্তি দিয়েছেন, নতুন নতুন শিল্প গড়ে ওঠার পরিবেশ গড়ে তুলেছেন, কর্মসংস্থানেরসুযোগ বৃদ্ধি করেছেন, বিভেদ দূর হবে আর ব্যক্তিগত বিনিয়োগে উৎসাহ বাড়বে। বাজেটে ব্যক্তিগত আয়করহ্রাসের ঘোষণা দেশের মধ্যবিত্ত নাগরিকদের খুশি করবে। ১০ শতাংশ থেকে একেবারে ৫শতাংশ করে দেওয়া অত্যন্ত সাহসী পদক্ষেপ। এর মাধ্যমে দেশের অধিকাংশ করদাতা উপকৃতহবেন। দেশের ছোট ও মাঝারি শিল্পগুলিই সবচাইতে বেশি কর্মসংস্থানের সুযোগকরে দেয় । এই বাজেট দেশেরউন্নয়নে এক মজবুত পদক্ষেপ। আমি আরেকবার অর্থমন্ত্রী , অর্থমন্ত্রক ও গোটা টিমকে অন্তর থেকে অনেক অনেক কৃতজ্ঞতা জানাই । এই কর্মসূচির মূল বিষয়গুলি নিম্নরূপ :– ক) এই বিমার জন্য কৃষকদের খরিফ শস্যের ক্ষেত্রে সাধারণভাবে মাত্র ২ শতাংশ এবং রবিশস্যের ক্ষেত্রে ১.৫ শতাংশ হারে প্রিমিয়াম দিতে হবে। বার্ষিক বাণিজ্যিক এবং উদ্যানজাত ফসলের ক্ষেত্রে কৃষকদের মাত্র ৫ শতাংশ প্রিমিয়াম দিতে হবে। খ) এই প্রকল্পে সরকারি ভর্তুকির কোনও সর্বোচ্চ সীমা থাকবে না। এমনকি, এই বিমা প্রিমিয়ামের অবশিষ্টাংশ ৯০ শতাংশ হলেও সরকারই তা বহন করবে। গ) এর আগে শস্য বিমার ক্ষেত্রে প্রিমিয়াম ভর্তুকি হারের সর্বোচ্চ সীমা থাকায় কৃষকরা কম পরিমাণে বিমাকৃত অর্থ পেতেন। বিমার ক্ষেত্রে ভর্তুকিবাবদ সরকারের ব্যয় নিয়ন্ত্রণে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। নতুন বিমা প্রকল্পে প্রিমিয়ামের ভর্তুকির সর্বোচ্চ সীমা তুলে দেওয়ার ফলে কৃষকরা বিমাকৃত ফসলের পুরো অর্থই পাবেন। ঘ) এই বিমার প্রকল্প রূপায়ণের ক্ষেত্রে প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো হবে। এছাড়া, ফসল সংগ্রহে ক্ষয়ক্ষতি কমাতে দূরসংবেদী ব্যবস্থা কাজে লাগানো হবে। নতুন এই শস্য বিমা প্রকল্পটি ‘এক জাতি – এক প্রকল্প’-এর ধরনে রূপায়িত হবে। মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলে খরা ও জলসঙ্কট পরিস্থিতি পর্যালোচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শনিবার, এক উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকে তিনি ঐ রাজ্যের খরা পরিস্থিতির বিভিন্ন দিকগুলি নিয়ে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে কেন্দ্র ও রাজ্যস্তরের পদস্থ আধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন। পর্যালোচনার সূত্রপাত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্র, রাজ্য, স্থানীয় সরকারি সংস্থা, বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এবং নাগরিক–সকল পক্ষকে সঙ্গে নিয়ে খরাপরিস্থিতির মোকাবিলায় আমাদের কাজ করে যেতে হবে। খরা রোধে মধ্য ও দীর্ঘমেয়াদি কি কি ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব সে সম্পর্কে প্রস্তাব পেশ করারও আহ্বান জানান তিনি। জলের সুদক্ষ ব্যবহারের ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আখ চাষে আধুনিক সেচব্যবস্থা রূপায়িত হলে আখ এবং তা থেকে উৎপাদিত চিনির গুণমান আরও বৃদ্ধি করা সম্ভব। আগামী তিন বছরের মধ্যে মহারাষ্ট্রের ১০০ শতাংশ আখ চাষের ক্ষেত্রে দক্ষ সেচ ব্যবস্থা গড়ে তোলা হবে বলে বৈঠকে জানান শ্রী দেবেন্দ্র ফড়নবিশ। জল ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে ছত্রপতি শিবাজী যে সমস্ত পদ্ধতির আশ্রয় গ্রহণ করেছিলেন তা থেকে আমাদের অনেক কিছুই শিক্ষণীয় রয়েছে বলে মত প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যের বিভিন্ন জলাশয়ের পুনরুদ্ধারে তাঁর রাজ্য বিশেষভাবে উদ্যোগ নিয়েছে বলে বৈঠকে উল্লেখ করেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’ রূপায়ণের লক্ষ্যে তাঁর রাজ্যে প্রাথমিক পর্বে কাজকর্মের অগ্রগতি বেশ সন্তোষজনক বলে জানান তিনি। শহরাঞ্চলে তরল ও কঠিন বর্জ্যের ব্যবস্থাপনায় আধুনিক পদ্ধতি অনুসরণের আহ্বান জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে সন্নিহিত গ্রামগুলিতে জল ও জৈব সারের যোগান উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। এই প্রস্তাবটি বিশ্বব্যাঙ্কের কাছে সুপারিশ সহ পাঠিয়ে দেওয়ার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারকে ধন্যবাদ জানান মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী। জল সংরক্ষণ ও মজুতের লক্ষ্যে ‘জল যুক্ত শিবার অভিযান’-এর অগ্রগতি সম্পর্কেও প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন শ্রী ফড়নবিশ। মারাঠওয়াড়া এবং বিদর্ভ অঞ্চলে গুরুত্বপূর্ণ সেচ প্রকল্পগুলির কাজ নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সম্পূর্ণ করতে তাঁর রাজ্য যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে তার একটি প্রামাণ্য চিত্র বৈঠকে তুলে ধরেন শ্রী ফড়নবিশ। প্রাতিষ্ঠানিক ঋণ সহায়তার আওতায় আরও বহু সংখ্যক কৃষককে নিয়ে আসা হচ্ছে বলেও প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি। কৃষকদের আয় ও উপার্জন দ্বিগুণ করে তোলা এবং মহারাষ্ট্রকে খরামুক্ত একটি রাজ্য হিসেবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগ ও পদক্ষেপের কথাও বৈঠকে বিবৃত করেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী। রাজ্য সরকারের বিভিন্ন কর্মপ্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে শস্যের বৈচিত্র্যকরণ, মূল্য সংযোজন এবং কৃষকদের আয় ও উপার্জন বৃদ্ধির ওপর বিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে এই লক্ষ্যে দুগ্ধ উৎপাদন, মৎস্যচাষ, মৌ ও হাঁস-মুরগি পালন সহ বিভিন্ন প্রকল্প ও কর্মসূচির রূপায়ণ প্রয়োজন। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণসভার নব-নির্বাচিত অধ্যক্ষা শ্রীমতী মারিয়া ফার্নান্দা এসপিনোসা গার্সেস শুক্রবার (১০ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। রাষ্ট্রসংঘের ৭৩তম সাধারণসভার অধ্যক্ষা পদে নির্বাচিত হওয়ায় শ্রীমতী এসপিনোসা’কে প্রধানমন্ত্রী অভিনন্দন জানান। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণসভার আসন্ন অধিবেশন সম্পর্কে শ্রীমতী এসপিনোসা তাঁর অগ্রাধিকারের বিষয়গুলির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীকে জানান। নতুন দায়িত্ব ও কর্তব্য পালনে শ্রীমতী এসপিনোসা’কে ভারতের পক্ষ থেকে পূর্ণ ও গঠনমূলক সহযোগিতার আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। সেন্টপিটার্সবার্গ-এর ডাতসান গুঞ্জেচোনেই বৌদ্ধ মন্দিরের প্রধান সন্ন্যাসী বালজেইভিচবাদ মায়েব-এর হাতে পবিত্র বৌদ্ধ ধর্মগ্রন্থ ‘উরগা কাঞ্জুর’-এর ১০০টি খণ্ড আজউপহারস্বরূপ তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বিরল ও দুষ্প্রাপ্য গ্রন্থ হিসাবে উপহারস্বরূপ এটি তাঁকে দান করেছিলেনমঙ্গোলিয়া সাধারণতন্ত্রের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে জাতীয় আদিবাসী উৎসবের সূচনাকরলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে বলেন যে এইপ্রথম দেশের বিভিন্ন প্রান্তের আদিবাসী গোষ্ঠীগুলি দিল্লিতে মিলিত হয়েছে দিওয়ালিউৎসব পালনের শুভ মুহূর্তে। দেশের আদিবাসী সম্প্রদায়ের দক্ষতা ও ক্ষমতা তুলে ধরাহবে জাতীয় রাজধানীতে আয়োজিত এই উৎসবে। আদিবাসী সম্প্রদায়ের সংগ্রামী জীবনযাত্রার কথাউল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এত দুঃখ-কষ্ট সত্ত্বেও সমষ্টিগতভাবে জীবনধারণেরঐতিহ্য তাঁরা লালন করে এসেছেন। শুধু তাই নয়, হাজারো সমস্যার সম্মুখীন হয়েও তাঁরাবাঁচতে শিখেছেন আনন্দ ও তৃপ্তির সঙ্গে। শ্রী মোদী বলেন, যৌবনে আদিবাসীদের সঙ্গে একত্রেসমাজসেবা করার সৌভাগ্য তাঁর হয়েছে। খুবই আশ্চর্যের বিষয় যে কোন অভাব-অনুযোগের কথাসচরাচর উচ্চারিত হয় না আদিবাসীদের কন্ঠে। এই বিষয়টিতে শহরাঞ্চলের মানুষরা প্রেরণালাভ করতে পারেন আদিবাসী সম্প্রদায়ের কাছ থেকে । প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্থানীয় সাধারণ মাল-মশলাদিয়ে খুব দক্ষতার সঙ্গেই নতুন নতুন পণ্য উদ্ভাবন করতে পারেন আদিবাসী মানুষরা। যদিসেগুলির বিপণন ব্যবস্থাকে উন্নত করে তোলা যায়, তাহলে এই সমস্ত পণ্যের চাহিদাবৃদ্ধি পাবে এবং এর ফলে আদিবাসী সম্প্রদায়ের সামনে সম্প্রসারিত হবে নানা ধরনের অর্থনৈতিকসুযোগ-সুবিধা। শ্রী মোদী বলেন, আদিবাসী সম্প্রদায়ের জীবনে পরিবর্তনসম্ভব করে তোলার জন্য দেশের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় তাঁদের যুক্ত করতে হবে। এই প্রসঙ্গে‘বনবন্ধু কল্যাণ যোজনা’র কথা উল্লেখ করেন তিনি। এই সম্পদসংরক্ষণের পাশাপাশি আদিবাসীদের ওপর শোষণ-অত্যাচারও বন্ধ হওয়া দরকার। গত কেন্দ্রীয়বাজেটের ঘোষণা অনুসারে আদিবাসী সম্প্রদায়গুলির বিকাশ ও উন্নয়নে জেলা খনিজফাউন্ডেশন প্রয়োজনীয় অর্থের যোগান সুনিশ্চিত করবে। সরকারি এই সিদ্ধান্ত খনিজসমৃদ্ধ জেলাগুলির উন্নয়নে এ পর্যন্ত অ-বিনিয়োগকৃত প্রচুর পরিমাণ অর্থেরসদ্ব্যবহারে সাহায্য করবে। ছত্রপতি শিবাজীর জন্মবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “ছত্রপতি শিবাজী মহারাজের জন্মবার্ষিকীতে আমি শ্রদ্ধা নিবেদন করছি। ছত্রপতি শিবাজীর শৌর্য ও বীর্যের কাহিনী আজ কিংবদন্তীতে পরিণত হয়েছে। যে অদম্য সাহসিকতা ও সংগ্রামী মানসিকতার অধিকারী ছিলেন তিনি, ভাষায় তা প্রকাশ করা সম্ভব নয়। ক্রিকেট তারকা বিরাট কোহলির ফিটনেস চ্যালেঞ্জ স্বীকার করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার (১৩ জুন) তাঁর একটি ফিটনেস ভিডিও সকলের সঙ্গে শেয়ার করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমার প্রাতঃকালীন শরীরচর্চার কয়েকটি মুহূর্ত এই ভিডিও-তে দেওয়া হ’ল। যোগচর্চার পাশাপাশি আমি পঞ্চতত্ত্ব-তে অনুপ্রাণিত হয়ে প্রকৃতির পাঁচটি উপাদান – পৃথিবী, জল, আগুন, বায়ু ও আকাশকে স্মরণ করে একটি ট্র্যাকে হেঁটেছি। এই ধরণের শরীরচর্চা নিজেকে খুবই প্রাণবন্ত ও সতেজ করে তোলে। “দিনের কোনও একটি সময়কে শরীরচর্চায় কাজে লাগানোর জন্য আমি প্রত্যেক ভারতীয়কে আহ্বান জানাই”। ‘মন কি বাত’ শুরু করতে গিয়ে আজ আমার মন ভারাক্রান্ত। দশ দিন আগে, ভারতমাতা তাঁর বীর সুসন্তানদের হারিয়েছেন। এই সাহসী বীরেরা আমাদের একশো কোটি ভারতবাসীকে রক্ষা করতে আত্মবলিদান করেছেন। দেশবাসী যাতে নিশ্চিন্তে ঘুমোতে পারেন সেদিকে খেয়াল রেখে এইসব বীর সুসন্তানরা দিন-রাত এক করে সজাগ দৃষ্টি রেখে চলতো। পুলওয়ামাতে সন্ত্রাসবাদীদের আক্রমণে বীর জওয়ানদের শহিদ হওয়ার পর সারা দেশের মানুষের মনেই আঘাত ও আক্রোশ জন্মেছে। শহিদের এবং তাঁদের পরিবারের প্রতি চারিদিক থেকে সমবেদনার বার্তা আসছে। এই সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে যে আবেগ আমার মনে জাগছে, সেই আবেগ প্রত্যেক দেশবাসীর অন্তরে আছে এবং মানবতায় বিশ্বাস করেন যাঁরা, সারা বিশ্বে মানবতাবাদী মানুষের মধ্যেও আছে। ভারতমাতাকে রক্ষা করার কাজে নিজের প্রাণ বলিদান দিচ্ছেন যাঁরা, দেশের সেই সব বীর, সুসন্তানদের প্রণাম জানাই। এই শহিদ হওয়া, সন্ত্রাসকে সমূলে উৎপাটিত করার জন্য আমাদের নিরন্তর উৎসাহিত করবে, আমাদের সঙ্কল্পকে আরও শক্ত করবে। দেশের সামনে উপস্থিত এই চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার জন্য আমাদের সবাইকে জাতপাত, সাম্প্রদায়িকতা, আঞ্চলিকতাবাদ এবং বাকি সব মতানৈক্য ভুলে যেতে হবে, যাতে সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে আমরা আগের চাইতে আরও দৃঢ়, শক্তিশালী এবং ফলপ্রসূ পদক্ষেপ নিতে পারি। আমাদের সশস্ত্র সেনা অদম্য সাহসের পরিচয় দিয়ে থাকে। দেশের শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য তাঁরা অত্যাশ্চর্য ক্ষমতা দেখিয়েছেন এবং সন্ত্রাসবাদীদের তাদের ভাষাতেই জবাব দিয়েছেন। আপনারা দেখেছেন যে সন্ত্রাসের ১০০ ঘণ্টার ভিতরেই কীরকম পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। সেনারা সন্ত্রাসবাদীদের এবং তাদের মদতকারীদের কীভাবে সমূলে ধ্বংস করা যায় তার সঙ্কল্প নিয়েছে। বীর সৈনিকদের শহিদ হয়ে যাওয়ার পর, মিডিয়ার মাধ্যমে তাঁদের পরিজনদের প্রেরণাদায়ক বার্তা সামনে এসেছিল, যা কিনা সমগ্র দেশের মানুষের মধ্যে অতীব সাহস, উৎসাহ এবং শক্তির প্রেরণা জাগিয়ে থাকে। বিহারের ভাগলপুরে শহিদ রতন ঠাকুরের পিতা রামনিরঞ্জনজী এই দুঃখের সময়েও উদ্দীপনার সঙ্গে দৃঢ় সঙ্কল্পের যে পরিচয় দিয়েছেন তা আমাদের সকলকে প্রেরণা জোগায়। তিনি বললেন যে ওঁর অন্য পুত্রকেও দেশের শত্রুদের সঙ্গে লড়াইয়ের জন্য পাঠাবেন এবং প্রয়োজন হলে নিজেও লড়াইয়ের ময়দানে উপস্থিত হবেন। ওড়িশার জগৎসিংহপুরের শহিদ প্রসন্না সাহুর পত্নী মীনাজীর অদম্য সাহসকে সমগ্র দেশ কুর্ণিশ জানাচ্ছে। তিনি তাঁর একমাত্র পুত্রকে CRPF-এ যোগদান করানোর সংকল্প নিয়েছেন। যখন জাতীয় পতাকায় ঢাকা শহিদ বিজয় সোরেনের মৃতদেহ ঝাড়খণ্ডের গুমলায় পৌঁছায়, সেই সময় তাঁর ছোট ছেলে বলে ওঠে যে সেও সেনাবাহিনিতে যোগ দেবে। এই নিষ্পাপ শিশুর উৎসাহের সঙ্গে এই দৃঢ় সঙ্কল্প, ভাবনা আজ ভারতবর্ষের ছোট ছোট সন্তানদের ভাবনাকে প্রকাশ করে। ভাই ও বোনেরা, গত পাঁচ মাসে প্রায় বারো লক্ষ দরিদ্র পরিবার এই যোজনার সুযোগ নিয়েছেন। আমি বুঝতে পারছি, দরিদ্র মানুষের জীবনে এর ফলে কত বড় পরিবর্তন এসেছে। আপনারা যদি কোনো দরিদ্র মানুষকে জানেন, যিনি অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছেন না, তাঁদের এই যোজনা সম্পর্কে জানান। এই যোজনা এইসব দরিদ্র জনসাধারণের উপকারের জন্যই চালু করা হয়েছে। আমার প্রিয় ভাই বোনেরা স্কুলে স্কুলে পরীক্ষা শুরু হতে যাচ্ছে। সারা দেশের বিভিন্ন শিক্ষা সংসদদশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর বোর্ড পরীক্ষার জন্য প্রস্তুতি শুরু করবে। পরীক্ষার্থীদের, তাদের অভিভাবক ও শিক্ষকদের সকলকে আমার আন্তরিক শুভেচ্ছা। কিছুদিন আগে দিল্লিতে ‘পরীক্ষা পে চর্চা’ এই কার্যক্রমে টাউন হল ফরম্যাটে এক বিপুল আয়োজন হয়েছিল। এই টাউন হল কার্যক্রমে টেকনলোজির সাহায্যে দেশ-বিদেশের কয়েক কোটি ছাত্রছাত্রীদের সঙ্গে,তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে,টিচারদের সঙ্গে কথা বলার অবকাশ হয়েছিল। ‘পরীক্ষা পে চর্চা’র একটা বৈশিষ্ট্য হচ্ছে পরীক্ষা সংক্রান্ত নানান বিষয় নিয়ে এখানে আলোচনা করা যায়। এমন কিছু না কিছু বিষয়চলে আসে যে তা সব পরীক্ষার্থীদের কাছেই অত্যন্ত কার্যকরী হয়ে উঠতে পারে। সমস্ত বিদ্যার্থী, তাদের শিক্ষক, পিতা-মাতা ইউটিউবে এই কার্যক্রমের রেকর্ডিং দেখতে পারেন, আসন্ন পরীক্ষা-যোদ্ধাদের ওসংশ্লিষ্ট সকলকে আমার আগাম শুভকামনা জানালাম। আমার প্রিয় দেশবাসী, ভারতের কথা হবে আর তার পুজোপার্বণের কথা হবে না তা তো হয় না। সম্ভবত আমাদের দেশে হেন দিন নেই যেদিনের সঙ্গে কোনও না কোনো উৎসব বা পার্বণ জুড়ে নেই বা কোনও বিশিষ্ট তাৎপর্য নেই, কারণ আমাদের সঙ্গে রয়েছে হাজার বছরের পুরনো ঐতিহ্য। আর কয়েকদিনের মধ্যে মহাশিবরাত্রি আসছে এবং এবার শিবরাত্রি সোমবার পড়েছে। সোমবার এবং শিবরাত্রি একসঙ্গে পড়ে গেলে আমাদের মন বিশেষ পবিত্র ভাবনায় ও ভক্তিতে ভরে ওঠে। শিবরাত্রি পার্বণ উপলক্ষে সব্বাইকে আমার অনেক অনেক শুভকামনা! তাঁদের নানান ভাবনা-চিন্তা নিয়ে আলোচনা হল আর সেগুলো আমাদের অত্যন্ত আত্মবিশ্বাসী করে তোলে,অনুপ্রাণিত করে। আমার এটা শুনেভালো লাগল যে মানুষ শুধু আমার ‘মন কি বাত’শোনেই না তা মনে রাখে, ‘মন কি বাত’নিয়ে চর্চাও করে। এ কথা মেনে নিতেই হবে এই দিব্যাঙ্গতরুণের ক্ষমতায়আমি অত্যন্ত প্রভাবিত হয়েছি। আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘মন কি বাত’ কার্যক্রমের মাধ্যমে আপনাদের সকলের সঙ্গে সংযোগ স্থাপন আমার কাছে এক অনন্য অভিজ্ঞতা। রেডিওর মাধ্যমে প্রত্যেক মাসে কোটি কোটি পরিবারের সঙ্গে আমি মুখোমুখি হই। এ আমার এক অত্যন্ত খুশির অনুভব। বন্ধুগণ নির্বাচন গণতন্ত্রের সব থেকে বড় উৎসব। আগামী দু’মাস আমরা নির্বাচন নিয়ে বিভিন্নভাবে ব্যস্ত থাকব। আমি নিজে এই নির্বাচনে একজন প্রার্থী হিসেবে দাঁড়াব। সারা দেশের বিভিন্ন স্হানের ১০০জন অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীর একটি দল আজ প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের সাম্মানিক ভাতা বৃদ্ধির ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রীর সাম্প্রতিক ঘোষনার জন্য তাঁকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন। অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের অভিনন্দন গ্রহণ করে প্রধানমন্ত্রী, তাঁর সঙ্গে সাক্ষাৎ করার জন্য দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে আগত কর্মীদের কাছে সন্তোষ ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী এইসব অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের সঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে শিশুর শারিরীক ও মানসিক বিকাশে পুষ্টির গুরুত্বের ওপর জোর দেন। তিনি বলেন, এক্ষেত্রে অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। বর্তমানে চলা ‘পুষ্টি মাস’এর প্রসঙ্গ উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই প্রচার আন্দোলনে যে গতিবেগ সঞ্চারিত হয়েছে, তা যেন স্তিমিত না হয়ে যায় সেদিকে লক্ষ্য রাখা দরকার। যে পুষ্টিগত সহায়তা গ্রাহকদের দেওয়া হচ্ছে, তা যেন বিচক্ষনতার সঙ্গে ব্যবহার করা হয় তা নিশ্চিত করার জন্য তিনি অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের পরামর্শ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শিশুরা অঙ্গনওয়াড়ি কর্মীদের কথাই বেশি শোনে। তাই শিশুদের মধ্যে সচেতনতা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে তাদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। শাসক শ্রেণীর ক্ষমতাসীন মানুষদের সম্পর্কেই ভারতে প্রচুর লেখালেখি হয়। কিন্তু যাঁরা নানা বাধা-বিপত্তি এবং প্রতিকূলতার মধ্যেও সংগ্রাম করে জীবনের মহান লক্ষ্য পূরণে সফল হয়েছেন, কিংবা সমাজের সেবা করে গেছেন তাঁদের সেরকমভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় না। বর্তমান যুগে আমাদের দেশে যে শিক্ষক সমাজের দায়িত্বশীল সদস্য হিসেবে হাজার হাজার তরুণ ছেলেমেয়েকে গড়ে তুলেছেন, তাঁদের কথা সেভাবে বলা হয় না বা আমাদের নজরে আসে না। ‘টাইম্‌স নাও’ অ্যামেজিং ইন্ডিয়ান অ্যাওয়ার্ড্‌স, ২০১৬ প্রদানকালে এক অনুষ্ঠানে একথা বলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। হাজার প্রতিকূলতার মধ্যেও যাঁরা সংগ্রামের মধ্য দিয়ে সাফল্যের নিদর্শন রেখেছেন, তাঁদের সম্মান জানানো হয় এই পুরস্কারের মাধ্যমে। পরিশেষে, এই পুরস্কারের মাধ্যমে সফল ও কৃতি মানুষদের সম্মানিত করার জন্য ‘টাইম্‌স নাও’কে ধন্যবাদ জানান প্রধানমন্ত্রী। শুভেচ্ছা জানান পুরস্কার বিজয়ীদের জীবনে তাঁদের সাফল্যের জন্য। ১৯৯৩ সালের এই সংক্রান্ত আইন অনুসারে ঐ বছরেই এই কমিশন গঠিত হয়েছিল। পরে, ৩১শে মার্চ, ২০০২ এবং ২৯শে ফেব্রুয়ারি, ২০০৮ সালে দু’বার কমিশনের মেয়াদ বাড়ানো হয়। হাত দিয়ে আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ নিষিদ্ধকরণ এবং পুনর্বাসন আইন অনুসারে কাজের অগ্রগতি তদারক করার জন্য সাফাই কর্মচারীদের জাতীয় কমিশনকে দায়িত্ব দেওয়া হবে। এছাড়া, আইনটি লঙ্ঘিত হলে শাস্তির সুপারিশ এবং যথাযথভাবে আইন রূপায়ণ বিষয়ে কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলিকে কমিশন উপদেশ দিয়ে থাকে। যদিও সাফাই কর্মচারীদের উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার অনেক ধরণের ব্যবস্থা ও পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, তা সত্ত্বেও আর্থ-সামাজিক অবস্থা এবং শিক্ষাগত দিক থেকে এইসব কর্মচারীদের বঞ্চনা সম্পূর্ণ দূর করা যায়নি। তাই যত দ্রুত সম্ভব দৈহিক শ্রম ও হাত দিয়ে আবর্জনা পরিষ্কারের পুরনো প্রথা সম্পূর্ণভাবে দূর করতে বিষয়টিকে সরকার অগ্রাধিকার দিতে চায়। বিনিময়ে, ভারতীয় বিনিয়োগকারীরা বিদেশেও একই ধরনের সুরক্ষার সুযোগ লাভ করবে। উল্লেখ্য, এ বিষয়ে প্রথম খসড়াটি ভারতে স্বাক্ষরিত হয় ১৪ মার্চ, ১৯৯৪ তারিখে। ১৯৯৩ সালে প্রথম খসড়া রচনার পরে আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতির যথেষ্ট পরিবর্তন ঘটেছে। সরকারি নিয়ম-নীতি ও বিদেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও অনেক কিছুই রদবদলের সূচনাও হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আসারুল হকের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার ইরানেরচাবাহারবন্দর উন্নয়নের লক্ষ্যে ‘এক্সিম’ব্যাঙ্কের ১৫০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার ঋণের সংস্থান ও ব্যবহারের জন্য জাহাজ মন্ত্রকের প্রস্তাবে অনুমোদন দিয়েছে। ছাবহারবন্দর ইরানে পারস্য উপসাগরের পাশে অবস্থিত এবং এই বন্দর এই অঞ্চলে সমুদ্রপথে বাণিজ্য সম্প্রসারণে সাহায্য করবে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অর্থ মন্ত্রক,বিদেশ বিষয়ক এবং জাহাজ মন্ত্রককেইরানের সঙ্গে চুক্তি চূড়ান্ত করতে এবং প্রকল্পটি রূপায়ন সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন বিষয়সমূহ সমাধানের অধিকার দিয়েছে। প্রকল্পটির কাজ যাতে ঘোষিত সঠিক সময়ে সম্পূর্ণ হয়, তা নিশ্চিত করতে নির্দিষ্ট পরিমাণ অর্থ জমা রাখতে হবে একটি পৃথক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে। সম্পত্তি ক্রয়-বিক্রয় বা সম্পত্তির গুণমান সম্পর্কিত যাবতীয় বিরোধের নিষ্পত্তিতে ফাস্ট ট্র্যাক বিচার ব্যবস্থারও সংস্থান রাখা হয়েছে বিলটিতে। রিয়েল এস্টেট সম্পর্কিত অভিযোগের শুনানি ক্রেতা আদালতও গ্রহণ করবে। ক্রেতাদের সম্মতি ছাড়া প্রোমোটার ফ্ল্যাট বা বাড়ির প্ল্যান ও নক্‌শা রদবদল করতে পারবেন না। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বৃহস্পতিবার (৭ জুন) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে ‘প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জনঔষধী প্রকল্প’ ও অন্যান্য কেন্দ্রীয় সরকারী স্বাস্থ্য পরিচর্যা প্রকল্পগুলির সুবিধাভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। বিভিন্ন সরকারি প্রকল্পের সুফলভোগীদের সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর এটি পঞ্চম মতবিনিময় অনুষ্ঠান। স্বাস্থ্য পরিচর্যা ও সুস্বাস্থ্যের গুরুত্বের ব্যাখ্যা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমস্ত কিছুর সাফল্য ও সমৃদ্ধির ভিত্তিই হ’ল স্বাস্থ্য। ভারত তখনই স্বাস্থ্যবান হয়ে উঠবে, যখন ১২৫ কোটি ভারতীয় সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হয়ে উঠবেন। সুফলভোগীদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের কাছে শারীরিক অসুস্থতা কেবলমাত্র বড় আর্থিক বোঝাই নয়, সেই সঙ্গে আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্রেও এর বিরূপ প্রভাব পড়ে। তিনি বলেন, সঙ্গত কারণেই সরকারের লক্ষ্য হ’ল প্রত্যেক নাগরিকের কাছে সুলভ স্বাস্থ্য পরিষেবা পৌঁছে দেওয়া। এই লক্ষ্যেই প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জনঔষধী পরিযোজনা চালু করা হয়েছিল, যাতে দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষজন সুলভে ওষুধপত্র পেতে পারেন এবং তাঁদের আর্থিক বোঝা কমানো যায়। সারা দেশে সরকার ৩ হাজার ৬০০-রও বেশি জনঔষধী কেন্দ্র রয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুলভ মূল্যে ৭০০-রও বেশি জেনেরিক ওষুধ এখান থেকে পাওয়া যায়। চিকিৎসার উপকরণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষকে আগে এ ধরণের উপকরণ কিনতে হলে সম্পত্তি বিক্রি বা বন্ধক দিতে হ’ত। এই বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখেই দরিদ্র ও মধ্যবিত্ত শ্রেণীর মানুষের স্বার্থে সরকার স্টেন্টস্‌ বা চিকিৎসা উপকরণের দাম লক্ষ্যণীয় হারে কমিয়েছে। হৃদযন্ত্রের উপকরণের দাম ২ লক্ষ টাকা থেকে কমে ২৯ হাজার টাকা হয়েছে বলে শ্রী মোদী জানান। ভারতে প্রতি বছর আনুমানিক এক থেকে দেড় লক্ষ হাঁটু প্রতিস্থাপন হয়। এই খরচ হ্রাস পাওয়ায় সাধারণ মানুষের প্রায় দেড় হাজার কোটি টাকার সাশ্রয় হয়েছে বলেও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী রাষ্ট্রীয় ডায়ালিসিস কর্মসূচির মাধ্যমে ৫০০-রও বেশি জেলায় ২ লক্ষ ২৫ হাজার রোগীর জন্য ২২ লক্ষের বেশি ডায়ালিসিস পরিচালিত হয়েছে। মিশন ইন্দ্রধনুষ কর্মসূচিতে ৩ কোটি ১৫ লক্ষের বেশি শিল্প ও ৮০ লক্ষ গর্ভবতী মহিলাকে টিকা দেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, সুলভে স্বাস্থ্য পরিষেবার নাগাল পেতে সরকার আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচি শুরু করেছে। এই কর্মসূচির মাধ্যমে ১০ কোটুই পরিবার ৫ লক্ষ টাকার স্বাস্থ্য বিমার সুবিধা পাবেন। ‘স্বচ্ছ ভারত মিশন’ প্রসঙ্গে মোদী বলেন, এই কর্মসূচি স্বাস্থ্যকর ভারত গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপচারিতায় সুফলভোগীরা জানান, প্রধানমন্ত্রী ভারতীয় জনঔষধী পরিযোজনার ফলে কিভাবে ওষুধপত্রের দাম কমেছে এবং তা সুলভ হয়েছে। হৃদযন্ত্রের উপকরণ ও হাঁটু প্রতিস্থাপনের খরচ কমায় কিভাবে তাঁদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এসেছে, সে বিষয়েও সুফলভোগীরা প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। সম্মানীয় ডঃ অ্যাঞ্জেলা মার্কেল! বেঙ্গালুরু’তে আপনার সঙ্গে মিলিত হতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। ভারত-জার্মান শীর্ষ বৈঠকে আপনাকে স্বাগত। গত এপ্রিলে হ্যানোভার ও হ্যানোভার মেস শহরে আমার সফরের ঘটনা আমি খুব ভালোভাবেই স্মরণ করতে পারি। আমাদের সৌভাগ্য যে আমরা সঠিক লক্ষ্যেই এগিয়ে চলেছি। বিশ্বের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ড সম্পর্কে সাম্প্রতিক তথ্য ও পরিসংখ্যানে আমাদের এই প্রত্যয় আরও বৃদ্ধি পেয়েছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে, শুধুমাত্র তাতেই আমাদের সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না। এই সমস্ত বিশ্লেষণী তথ্যকে বাস্তবে রূপান্তরিত করতে সম্ভাব্য সবরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যেতে আমরা তাই অঙ্গীকারবদ্ধ। এক মুক্ত মানসিকতা ও আন্তর্জাতিক দৃষ্টিভঙ্গী নিয়ে ভারত’কে একটি সহজ ও সুলভ বাণিজ্য কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তুলতে আমরা গত ১৫ মাস ধরে অক্লান্ত পরিশ্রম চালিয়ে গেছি। বিশ্ব ব্যাঙ্ক গোষ্ঠীর এক সাম্প্রতিক সমীক্ষায় প্রকাশ যে আমাদের বিভিন্ন রাজ্যের সরকার ব্যবসা-বাণিজ্যকে সহজতর করে তুলতে যথোচিত গুরুত্বের সঙ্গে চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে। যুক্তরাষ্ট্রীয় শাসন ব্যবস্থার সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে এবং সহযোগিতা ও প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় মানসিকতা নিয়ে রাজ্যগুলি কাজ করে চলেছে। এক স্বচ্ছ, অন্তর্ভেদী ও অনুকূল নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা যাতে দ্রুত চালু করা যায়, সেই লক্ষ্যে রাজ্যগুলি এখন পরস্পরের সঙ্গে প্রতিযোগিতায় সম্মুখীন। আজকের দিনে ভারতে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল দেশের যুবসমাজকে উৎপাদনমুখী কাজকর্মের সঙ্গে যুক্ত করা। স্বল্প ও মধ্য মেয়াদে শতাংশের এই হারকে আমাদের অবশ্যই ২৫-এ উন্নীত করতে হবে। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। এই কাজ সফল করে তুলতে বাণিজ্যিক কাজকর্মকে আরও সহজ করে তোলা ছাড়াও শিল্প ও পরিকাঠামোর অনুমোদন ও অনুমতি দানের বিষয়টিও আমরা দ্রুত সম্পন্ন করে ফেলেছি। কয়লা, লৌহ আকরিক এবং অন্যান্য খনিজ পদার্থের মতো প্রধান প্রধান প্রাকৃতিক সম্পদের নিলাম ও বন্টনের বিষয়টিকে স্বচ্ছতার সঙ্গে পরিচালনা করে গত ১৫ মাসে বিনিয়োগকারীদের উপযোগী একটি ক্ষেত্র আমরা প্রস্তুত করে ফেলেছি। আমরা জানি, আমাদের দেশে যে আর্থিক সহায়সম্পদ রয়েছে আমাদের প্রয়োজনের তুলনায় তা অপর্যাপ্ত। নির্মাণ ও চিকিৎসার সাজসরঞ্জাম উৎপাদনের ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়টিকে আমরা সংশোধিত রূপ দিয়েছি। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সম্পর্কিত আরও বেশ কিছু বিষয়কে আমরা বাস্তবমুখী করে তুলেছি। আমরা ভবিষ্যতের উপযোগী ব্যবহারিক ও সামাজিক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে আগ্রহী। আর্থিক সহায়সম্পদ পরিচালনার ক্ষেত্রে শৃঙ্খলা নিয়ে এসে পরিকাঠামো ক্ষেত্রের জন্য আমরা আরও বেশি করে সম্পদ বন্টন করতে পেরেছি। এছাড়াও, আমরা গঠন করছি ভারতীয় বিনিয়োগ ও পরিকাঠামো তহবিল। আমাদের নিজস্ব সহায়সম্পদ থেকে এই তহবিলে ২০ হাজার কোটি টাকার (প্রায় ২.৭ বিলিয়ন ইউরো) বার্ষিক সংস্থান রাখার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছি। সম্পদ পরিচালনার ক্ষেত্রে আমরা এক পেশাদার টিমকেও কাজে লাগাচ্ছি। রেল, সড়ক এবং সেচ প্রকল্পগুলির ক্ষেত্রে আমরা করমুক্ত পরিকাঠামো বন্ড ছাড়ারও পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। বেশ কয়েকটি কর ও নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা চালু থাকার ফলে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়টি প্রতিকূল অবস্থায় ছিল। বিনিয়োগকারীদের আশঙ্কাগুলি দূর করতে আমরা বেশ কিছু দৃঢ় পদক্ষেপ গ্রহণ করেছি। কয়েকটি দৃষ্টান্ত আপনাদের সামনে তুলে ধরছি :- > নিরাপত্তা ও পরিবেশগত ছাড়পত্র সহ অনুমতিদানের বিষয়টি আমরা দ্রুততার সঙ্গে সম্পন্ন করেছি। > শিল্প লাইসেন্সের মেয়াদ আমরা বৃদ্ধি করেছি। > বেশ কিছু প্রতিরক্ষা সরঞ্জামের ক্ষেত্রে আমরা লাইসেন্স প্রথা তুলে নিয়েছি এবং কোনও কোনও ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণগুলিকে আরও খোলামেলা করে তুলেছি। > প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত শিল্প লাইসেন্সের মেয়াদ আমরা ৩ বছর থেকে বাড়িয়ে করেছি ১৮ বছর পর্যন্ত। > আমরা সুস্পষ্টভাবে ঘোষণা করেছি যে, অতীতের কোনও তারিখ থেকে আমরা কর প্রথা চালু করবো না। > বিকল্প বিনিয়োগ তহবিলের নিয়ম-কানুন সম্পর্কে আমরা বিজ্ঞপ্তি জারি করেছি, যাতে এই ধরণের তহবিলে বিদেশি বিনিয়োগের বিষয়টি আরও সহজ হয়ে ওঠে। > রিয়েল এস্টেট বিনিয়োগ ট্রাস্টের ক্ষেত্রে মূলধনী লাভের ওপর কর ধার্যের বিষয়টিকে আমরা আরও বাস্তবসম্মত করে তুলেছি। > স্থায়ী প্রতিষ্ঠান সংক্রান্ত নিয়ম-কানুনও আমরা সংশোধন করেছি। > দেউলিয়া সংক্রান্ত একটি নতুন আইন রচনার কাজে আমরা ব্যস্ত রয়েছি; কোম্পানি ল ট্রাইব্যুনাল খুব শীঘ্রই গঠিত হচ্ছে। আমি এখানে পরিষ্কার করে বলতে চাই যে, আমাদের কর ধার্যের বিষয়টি খুবই স্বচ্ছ ও অন্তর্ভেদী। সৎ করদাতা এবং প্রকৃত বিনিয়োগকারী যাতে কর সংক্রান্ত বিষয়ে দ্রুত ও ন্যায্য বিচার পান, তা নিশ্চিত করতে আমরা আগ্রহী। আমাদের এই সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণের ফলে বেসরকারি ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে আমরা ইতিবাচক সাড়া পেয়েছি। আমাদের মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধির হার ৭ শতাংশ। বিগত বছরের সমতুল সময়কালের তুলনায় প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের মাত্রা ৪০ শতাংশের মতো বৃদ্ধি পেয়েছে। MOODY’s ভারতের ক্ষেত্রে রেট ধার্য করেছে পজিটিভ, অর্থাৎ, ইতিবাচক। বিনিয়োগ আকর্ষণের দিক থেকে আঙ্কটাড ভারতের মর্যাদাকে আরও উন্নীত করেছে। এ পর্যন্ত ১৫টি দেশের মধ্যে আমরা রয়েছি নবম স্থানে। বিশ্ব অর্থনৈতিক ফোরামের আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামূলক সূচক অনুযায়ী ভারত ১৬টি স্থান অতিক্রম করে নিজের স্থান প্রতিষ্ঠা করতে পেরেছে, যেখানে গত ৫ বছর ধরে ভারতের স্থান ক্রমশ নিম্নমুখী হচ্ছিল। অন্যদিকে, গ্রিন ফিল্ড ইনভেস্টমেন্টের দিক থেকে ২০১৫’র প্রথমার্ধে ভারত রয়েছে এক নম্বর স্থানে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফরেন পলিসি সাময়িক পত্রে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের একটি স্থান হিসেবে ভারত’কে রাখা হয়েছে প্রথম স্থানে। এইভাবেই মাত্র গত ১৫ মাসে বিশ্বের কাছে আমরা সাফল্যের সঙ্গেই নিজেদের বিশ্বাসযোগ্যতাকে পুনরুদ্ধার করতে পেরেছি। আমি বরাবরই বলে এসেছি যে, ব্যবসা-বাণিজ্য করার কথা সরকারের নয়। মেধা সম্পদ সম্পর্কিত প্রশাসনিক ব্যবস্থা গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বচ্ছতা বজায় রাখতে এবং অনলাইন ব্যবস্থায় প্রক্রিয়ার কাজ সম্পন্ন করতে আমরা বেশ কিছু উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। একটি সুসংহত জাতীয় মেধা সম্পদ অধিকার সংক্রান্ত নীতিও চূড়ান্ত হওয়ার পথে। গত সপ্তাহে আমি নিজে বিষয়টির পর্যালোচনা করেছি। একথা আমি বলতে পারি যে, এই ব্যবস্থা হয়ে উঠবে প্রগতিশীল ও এগিয়ে চলার একটি নীতি। আমাদের স্বপ্নকে সফল করে তুলতে আপনাদের সক্রিয় অংশগ্রহণ আমরা প্রার্থনা করি। সম্প্রতি সিলিকন ভ্যালির পরিবেশের মধ্যে কর্মরত আমাদের যুবসমাজের মধ্যেও এই শক্তিকে আরও উজ্জীবিত করে তোলার চেষ্টা আমরা করেছি। সত্যি কথা বলতে কি, ভারত এখন এক বিরাট তথ্য প্রযুক্তি বিপ্লবের দোরগোড়ায় দাঁড়িয়ে। আমরা চলে এসেছি এমন এক উচ্চতায় যেখানে আমাদের ১২৫ কোটি নাগরিকের আশা-আকাঙ্কা পূরণ হতে চলেছে। এই সমস্ত উদ্যোগ আধুনিক প্রযুক্তি ও মানবসম্পদের ক্ষেত্রে বিনিয়োগের নতুন নতুন ক্ষেত্রে আবিষ্কার করে চলেছে। ভারতে দেশীয় বাজারের ক্ষেত্র ব্যাপক ও বিশাল। এক দশক আগের মতো মেধাবী তরুণরা এখন আর বিরাট অঙ্কের বেতনের চাকরির মুখাপেক্ষী নয়। সাম্প্রতিক অতীতে বেশ কিছু প্রথম শিল্পোদ্যোগ গড়ে ওঠার ঘটনা আমরা প্রত্যক্ষ করেছি। এর মধ্যে অনেকগুলিই এখন বিশ্বের প্রতিষ্ঠিত শিল্পোদ্যোগগুলিকে চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে দিয়েছে। পরিশেষে, আমি নিশ্চিতভাবে বলতে চাই যে, আপনাদের মতামত, উদ্ভাবন ক্ষমতা ও শিল্প প্রতিষ্ঠার মানসিকতাকে স্বাগত জানাতে আমরা প্রস্তুত। এর আগে হ্যানোভারে আমি যা বলে এসেছি, সে কথারই পুনরাবৃত্তি করছি এখানে – তা হল, আমাদের নীতি ও পদ্ধতিতে প্রয়োজনীয় সংশোধন আনতেও আমরা দ্বিধা করবো না। আমি আরও বলতে চাই যে, ভারত এর আগে আর কখনও বাইরের কোনও মেধা, প্রযুক্তি বা বিনিয়োগকে এতো সাদরভাবে গ্রহণ করেনি। আমরা অনুভব করেছি যে, ভারতীয় অর্থনীতিকে দ্রুত এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার মতো পরিস্থিতি ভারতে এখন সৃষ্টি হয়েছে। আপনাদের সঙ্গে একযোগে কাজ করার জন্য আমি অধীরভাবে আগ্রহী। তাই, ভারতে থেকে কাজ করা মানেই বোঝায় দৃঢ় বাণিজ্যিক ইচ্ছার প্রতিফলন। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’য় অংশগ্রহণ করা মানেই উন্নততর বাণিজ্যিক লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া। আপনাদের সকলকে অসংখ্য ধন্যবাদ! পাকিস্তানের সাংসদ তথা তেহরিক-এ-ইনসাফ পার্টির চেয়ারম্যান মিঃ ইমরান খান প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে দেখা করে বিভিন্ন বিষয়ে মত বিনিময় করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জাপানের প্রধানমন্ত্রী শ্রী শিনজো আবের জন্মদিনে তাঁকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী বলেছেন, “আমার বন্ধু শ্রী শিনজো আবে’কে জন্মদিনের অনেক শুভেচ্ছা। আমি তাঁর দীর্ঘায়ু ও সুস্বাস্থ্য কামনা করি। প্রধানমন্ত্রী বাগলিহারের ৪৫০ মেগা ওয়াটের জল-বিদ্যুৎ প্রকল্পের দ্বিতীয় পর্যায়ের উদ্বোধন করেন এবং রামবানের চান্দেরকোটে ৪৪ নং জাতীয় সড়কের উধমপুর-রামবান এবং রামবান-বানিহাল অংশ চার লেন করার শিলান্যাস করেন| নয়াদিল্লি, ০১ এপ্রিল, ২০১৫ দেশের বিকাশে এবং এক দীর্ঘস্থায়ী সুভবিষ্যতের প্রয়োজনে রাজ্যগুলিকে কেন্দ্রের সাথে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি রাউরকেলায় উপস্থিত হয়েছেন বিকাশের বার্তা নিয়ে। রাউরকেলা শহর, ভারতবর্ষকে ইস্পাত ক্ষমতা দিয়েছে বলে তিনি মন্তব্য করেন। তাঁর অভিমত, দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও রাউরকেলা ইস্পাত কারখানা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তাঁর অভিমত, ভারতের খনিজসম্পদের ক্ষেত্রে মূল্য সংযোজনের আবশ্যকতা রয়েছে দেশের অর্থনীতিকে চাঙ্গা করার স্বার্থেই। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্ব অনেক আশা নিয়েই তাকিয়ে রয়েছে ভারতের দিকে। তিনি বিশ্বের বিনিয়োগকারীদের ভারতে বিনিয়োগ করার আহ্বানও জানান। অসম, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা, বিহার ও উত্তর প্রদেশ-সহ সমগ্র পূর্ব ভারতের বিকাশের প্রয়োজনীয়তার ওপরও তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন। শ্রী মোদীর বক্তব্য অনুযায়ী, রাষ্ট্রের বিকাশে কেন্দ্র – রাজ্য উভয়ই সমান ভাগীদার। তাঁর অভিমত, এখন দীর্ঘস্থায়ী ভবিষ্যতের লক্ষ্যে রাজ্যগুলিকে একযোগে কাজ করতে হবে। জাপানেরপ্রধানমন্ত্রী মাননীয় মিঃ শিনজো আবে; জাপানথেকে আগত মাননীয় মন্ত্রী এবং বরিষ্ঠ প্রতিনিধিবৃন্দ; গুজরাটেরমুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিজয় রুপানি; গুজরাটেরউপ-মুখ্যমন্ত্রী শ্রী নীতিন প্যাটেল; দুইদেশের বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দ; জাপানের নেতৃত্ব, সরকার, শিল্প গোষ্ঠী এবং জনসাধারণের সঙ্গেআমার ব্যক্তিগত সম্পর্ক এক দশকেরও বেশি। আমার সেই স্বপ্ন আজ সফল হয়েছে। আমি আনন্দের সঙ্গেই লক্ষ্য করছি যে জাপানিদের জন্য এখানে নির্দিষ্টউপ-নগরী স্থাপনের পাশাপাশি, অনেক ঘর-বাড়ি এবং প্রতিষ্ঠানও গড়ে উঠেছে।তাঁরা যাতে জীবনকেভালোভাবে উপভোগ করতে পারেন এবং কাজকর্মের সুবাদে উন্নততর অভিজ্ঞতা অর্জন করতেপারেন, সেই লক্ষ্যেই এই সমস্ত গড়ে তোলা হয়েছে। আজও আরেকটি জাপানি উপ-নগরী স্থাপনেরকথা আমরা ঘোষণা করেছি। ‘প্রাণবন্ত গুজরাট’ অনুষ্ঠানে প্রথম অংশীদার দেশ হিসেবে যোগদিয়েছিল জাপান। গুজরাটের সরকার এবং শিল্প জগতের কাছে এই ঘটনার স্মৃতি আজও অমলিন।অংশীদারিত্বের এই ধারা যে শুধুমাত্র নিরন্তর রয়ে গেছে তাই নয়, আমাদের যুক্তকর্মপ্রচেষ্টাও উত্তরোত্তর প্রসার লাভ করেছে। এরই পথ ধরে ভারতীয় অর্থনীতিতে জাপানেরকর্মপ্রচেষ্টা আরও নিবিড়ভাবে যুক্ত হওয়ার সুযোগ লাভ করেছে। এই প্রচেষ্টা ও প্রক্রিয়ায়নানাভাবে সহায়তা করার জন্য কিডানরেন, জেট্রো এবং অন্যান্য সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানকেআমি ধন্যবাদ জানাই। জাপান প্লাস-এর মাধ্যমে এই প্রক্রিয়া আরও জোরদার হয়ে উঠেছে। জাপানেরসরকার এবং জনসাধারণ আমাকে এবং আমার দেশকেবরাবরই ভালোবাসার চোখে দেখে এসেছে। সত্যিকথা বলতে কি, ১২৫ কোটি ভারতবাসীওজাপানের জনসাধারণের প্রতি একই ধরনের দৃষ্টিভঙ্গি পোষণকরে। ব্যক্তিগত পর্যায়ে উৎসাহ ও সমর্থনযুগিয়ে যাওয়ার জন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞপ্রধানমন্ত্রী আবে-র কাছে। প্রধানমন্ত্রী আবে এবং আমি আলাপ-আলোচনায় মিলিত হওয়ারকোন সুযোগকেই হাতছাড়া করি না। একইভাবে, গত কয়েক বছর ধরে ভারতে জাপানি সংস্থাগুলির সংখ্যাওউত্তরোত্তরভাবে বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। আজ এখানে যে কর্মপ্রচেষ্টাগুলির সূচনা হল, তাথেকেই দু’দেশের সম্পর্কের গভীরতাকে আপনারা উপলব্ধি করতে পারবেন। § প্রথমেই আমি উল্লেখকরব মুম্বাই-আমেদাবাদ উচ্চগতির রেল প্রকল্পের কথা। § এই প্রকল্পটিতেজাপান সরকারের সমর্থন ও সহযোগিতার জন্য আমরা তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। § উচ্চগতির রেলপ্রকল্পের সঙ্গে সঙ্গে গড়ে উঠছে একটি প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠানও। গুজরাট ছাড়াও অন্যান্য অঞ্চলগুলির অবস্থান হল, রাজস্থান,অন্ধ্রপ্রদেশ এবং তামিলনাড়ুতে। গুজরাট ছাড়াও, কর্ণাটক, রাজস্থান এবংতামিলনাড়ুতে এই কর্মসূচি রূপায়িত হবে। § আপনারা সকলেই জানেনযে বারাণসী হল একটি প্রাচীন এবং পবিত্র নগরী যা হল আমার দ্বিতীয় নিজভূমি। বারাণসীসম্মেলন কেন্দ্রটি হল জাপানের কিয়োটো শহর এবং ভারতের বারাণসীরমধ্যে সাংস্কৃতিকসহযোগিতার এক বিশেষ প্রতীক। ২০১৫ সালে যখন আমরা একত্রে বারাণসী সফরে গিয়েছিলাম,তখনই আমি এবং প্রধানমন্ত্রী আবে এই প্রকল্পটির কথা চিন্তা করেছিলাম। আমি এর নামদিয়েছি ‘রুদ্রাক্ষ’ যা শুধুমাত্র ভালোবাসারই প্রতীক নয়, একইসঙ্গে তা মানবতার প্রতিশিব দেবতার এক প্রসাদ বিশেষও। তাই, ‘রুদ্রাক্ষ’ হয়ে উঠবে বারাণসীর প্রতি জাপানেরএক প্রেমের মাল্যোপহার। আবার একইসঙ্গে তা হবে সারনাথে আমাদের মিলিত বৌদ্ধ ঐতিহ্যেরপ্রতি এক বিশেষ শ্রদ্ধার্ঘ্য। বহু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়েচুক্তি সম্পাদনের কাজও আমরা সম্পূর্ণ করেছি। আমাদের এই দুটি দেশের মধ্যে বোঝাপড়ারগভীরতা কতখানি এবং পরস্পরের প্রতি আমরা যে কতটা স্বচ্ছ্ন্দ এবং আস্থাশীল এ সমস্তঘটনা তারই প্রমাণ। গততিন বছরে বাণিজ্যিক কাজকর্ম সহজতর করে তোলার লক্ষ্যেআমরা কঠোর পরিশ্রম করেছি। বেশকিছু প্রশাসনিক সংস্কারের পথ ধরে দেশের বাণিজ্যিক আবেগ ও আগ্রহ তাৎপর্যপূর্ণভাবেবৃদ্ধি পেয়েছে। ভারতকে একুশ শতকে উত্তরণের উপযোগী করে গড়ে তোলাই হল এই সংস্কারকর্মসূচির উদ্দেশ্য। আমাদের দেশের রয়েছে এক অনবদ্য যুবশক্তি। এর সাহায্যে বিশ্বেরএকটি বিশেষ উৎপাদন কেন্দ্র হিসেবে আমরা তুলে ধরতে চলেছি ভারতকে। এই লক্ষ্যে ‘মেকইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিরও আমরা সূচনা করেছি। ঐ একই লক্ষ্যে আমরা সূচনা করেছি ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ অভিযানটির। ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’কর্মসূচির আরেকটি উদ্দেশ্য হল দেশে উদ্ভাবনের উপযোগী এক বলিষ্ঠ এবং অনুকূল পরিবেশনিশ্চিত করা। এর মধ্যে রয়েছে ১০০টি স্মার্ট নগরী গড়েতোলার কর্মসূচি, ৫ কোটি নিরাশ্রয় পরিবারের জন্য বাসগৃহ গড়ে তোলা, সড়ক নির্মাণ,সেতু ও বন্দর নির্মাণ এবং রেলপথ ও রেল স্টেশন গড়ে তোলা। ভারতে যে বিশাল সুযোগ ও সম্ভাবনা এবং দক্ষশ্রমশক্তি রয়েছে তা থেকে বিশেষভাবে উপকৃত হবে জাপানও। প্রায় প্রত্যেকটি দিনই আমরা বিনিয়োগ এবং বাণিজ্যিক কাজকর্মের ক্ষেত্রেনানা ধরনের সুযোগ-সুবিধার প্রসার ঘটিয়ে চলেছি। বিভিন্ন সংস্থা এবং তাদের বাণিজ্যিককর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে নীতি সংক্রান্ত এবং নিয়ন্ত্রণ সম্পর্কিত যে সমস্ত সমস্যাছিল আমরা সেগুলিরও উপযুক্ত সমাধান করেছি। আমাদের এই ধরনের প্রচেষ্টার সুফলও আমরালাভ করেছি। ভারতের বৃহত্তম কর সংস্কার কর্মসূচি জিএসটি-র সূচনা হয়েছেঅতি সম্প্রতি। বিশ্বের উদার প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতির দেশগুলিরমধ্যে অন্যতম হল ভারত। প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ সংক্রান্ত অনুমোদনের ৯০ শতাংশপ্রক্রিয়াই এখন সম্ভব করে তোলা হয়েছে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায়। অবলুপ্তি ঘটানো হয়েছেবিদেশি বিনিয়োগ বিকাশ পর্ষদেরও। আমাদের এই সমস্ত উদার নীতি গ্রহণের ফলেগত আর্থিকবছরে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের মাত্রা উন্নীত হয়েছে ৬০ বিলিয়ন মার্কিনডলারে। জাপান থেকে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের পরিমাণ গত তিন বছরে বৃদ্ধি পেয়েছেপ্রায় তিনগুণ। নতুন দেউলিয়া এবং ঋণ খেলাপি বিধির মাধ্যমে বিনিয়োগের পথ থেকে সরেযাওয়ার পথকেও সুগম করে তোলা হয়েছে বিনিয়োগকারীদের জন্য। বাণিজ্যিক বিষয়গুলির দ্রুতফয়সালায় আমরা স্থাপন করেছি বাণিজ্যিক আদালত এবং বাণিজ্যিক বিভাগ। মধ্যস্থতা আইনসংশোধনের ফলে মধ্যস্থতার কাজকর্ম এখন দ্রুততর হয়ে উঠবে। আমরা ঘোষণা করেছি এক নতুনমেধাসম্পদ অধিকার নীতিরও। ভারত ও জাপান হল শুধুমাত্র প্রাচীন সভ্যতামাত্রনয়, একইসঙ্গে উজ্জ্বল ও প্রাণচঞ্চল গণতান্ত্রিক ব্যবস্থাও। প্রগতি ও সমৃদ্ধির সুফলকিভাবে সাধারণ মানুষের কাছে আরও ভালোভাবে পৌঁছে দেওয়া যায়, সে সম্পর্কে সম্যকজ্ঞান ও ধারণা রয়েছে আমাদের দুটি দেশেরই। একুশের শতক যে এশিয়ারই শতক, একথা আমি বারবার উচ্চারণ করেএসেছি। এশিয়ার এই নতুন অভ্যুদয়ে ভারত ও জাপান যে এক প্রধান ভূমিকা পালন করতে পারেএকথাও আমি বলে এসেছি। কৌশলগত এবং অর্থনীতির দিক থেকে তাৎপর্যময় বিষয়গুলিতে ভারত ওজাপানের যুক্ত প্রচেষ্টা বিশ্ব অর্থনীতিকে আরও গতিময় করে তুলতে পারে। এশিয়া তথাসমগ্র বিশ্বের পক্ষে এক শক্তিশালী ভারত এবং বলিষ্ঠ জাপান যে স্থিতিশীল ব্যবস্থারসূচক হয়ে উঠবে, এ সম্পর্কে আমি দৃঢ় আত্মবিশ্বাসী। আমাদের এই পারস্পরিক তথা বিশ্বপ্রচেষ্টায় আমাদের যোগ্য অংশীদার হয়ে ওঠার জন্য আমি ধন্যবাদ জানাই প্রধানমন্ত্রীআবে এবং জাপানকে। আমাদের মৈত্রী এবং পারস্পরিক আস্থার শক্তিতে বলীয়ান হয়ে আমিআমন্ত্রণ জানাই আরও বেশি সংখ্যক জাপানি নাগরিক এবং শিল্প সংস্থাকে এ দেশে থেকে বাণিজ্যিকপ্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে। আপনাদের এই প্রচেষ্টা সফল হয়ে উঠুক, এইপ্রার্থনা জানাই। প্রয়োজনে যে কোন ধরনের সমর্থন ও সহযোগিতার আশ্বাস রইল আমার পক্ষথেকে। ২০১৮-র কমনওয়েলথ গেমস্‌-এ অংশগ্রহণকারী ভারতীয় প্রতিযোগীদের অভিনন্দিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আমাদের সকল খেলোয়াড়ই যথাসাধ্য চেষ্টা করেছেন এবং ভালোই খেলেছেন। যে সমস্ত ক্রীড়াবিদ দেশকে পদক এনে দিয়েছেন, তাঁদের সকলকেই আমার অভিনন্দন। ২০১৮-র কমনওয়েলথ গেমস্‌-এ অংশগ্রহণকারী প্রত্যেক খেলোয়াড়ই আমাদের অনুপ্রাণিত করেছেন। ২০১৮-র কমনওয়েলথ গেমস্‌-এ ভারতের সাফল্য আরও বেশি সংখ্যক তরুণ ও যুবকদের খেলাধূলার প্রতি উদ্বুদ্ধ করবে বলেই আমার বিশ্বাস।ঐ সাফল্য প্রত্যেকের জীবনে শক্তি ও ক্ষমতার গুরুত্ব সম্পর্কে আরও বেশি মাত্রায় সচেতনতার প্রসার ঘটাবে। প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে প্রতিবেশীসুলভ সম্পর্কের কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রচলিত প্রোটোকলের বাইরে গিয়ে নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ও স্বল্প সময়ের ব্যবধানে পারস্পরিক দেশে সফর অব্যাহত রাখতে হবে। তিনি বলেন, প্রতিবেশী দেশগুলির সঙ্গে ঘনিষ্ঠতা তাঁর এবং বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রীর মধ্যে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে আলাপ-আলোচনা তথা সাক্ষাতেরই প্রতিফলন ঘটায়। দুই দেশের মধ্যে ১৯৬৫-র আগে যে ধরণের যোগাযোগ ব্যবস্থা ছিল, তা পুনঃপ্রতিষ্ঠা করার ব্যাপারে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনার কথাও প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। এই লক্ষ্যে বিগত কয়েক বছরের অগ্রগতিতে শ্রী মোদী সন্তোষ প্রকাশ করেন। তিনি আরও বলেন, আজ আমরা বিদ্যুৎ সরবরাহ বৃদ্ধি তথা রেল যোগাযোগ বাড়াতে দুটি প্রকল্পও শুরু হয়েছে। ২০১৫-তে তাঁর বাংলাদেশ সফরের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, তখন সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে বাংলাদেশকে অতিরিক্ত ৫০০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হবে। তিনি আরও বলেন, এই প্রকল্পের কাজ শেষ হওয়ার ফলে ভারত থেকে বাংলাদেশে ১.১৬ গিগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করা হচ্ছে। ভারত ও বাংলাদেশের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ মেগাওয়াট থেকে গিগাওয়াটে নিয়ে যাওয়ার এই যাত্রাপথ এক সোনালী যুগের প্রতীকস্বরূপ। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, আখাউরা-আগরতলা রেল যোগাযোগ দুই দেশের মধ্যে সীমান্তপারের যোগাযোগের ক্ষেত্রে আরও একটি যোগসূত্র স্থাপন করবে। সুষ্ঠুভাবে এই কাজ সম্পন্ন করতে ত্রিপুরার মুখ্যমন্ত্রী শ্রী বিপ্লব কুমার দেবের ভূমিকারও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ২০২১ সাল নাগাদ বাংলাদেশকে মধ্যবিত্ত আয়ের দেশ হিসেবে এবং ২০৪১-এর মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে গড়ে তোলার যে লক্ষ্য নিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী তার প্রশংসা করেন। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল থেকে তেলেঙ্গানা রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে ৭১২ কোটি ৬২ লক্ষ টাকা। রাজ্য বিপর্যয় ত্রাণ তহবিলে ২০১৫-১৬ আর্থিক বছরে কেন্দ্রীয়ভাবে বরাদ্দ ২০৫ কোটি ৫০ লক্ষ টাকাও ইতিমধ্যে ঐ রাজ্যকে দেওয়া হয়েছে। ২০১৬-১৭ আর্থিক বছরেরপ্রথম কিস্তিবাবদ রাজ্য বিপর্যয় ত্রাণ তহবিল থেকে কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে তেলেঙ্গানাকে দেওয়া হয়েছে ১০৮ কোটি টাকা। তেলেঙ্গানায় জলাভাবে শুকিয়ে যাওয়া বিভিন্ন জলাশয়ে জলের উৎস সন্ধান এবং জল মজুত ও সংরক্ষণের লক্ষ্যে ‘মিশন কাকাতিয়া’র আওতায় যে সমস্ত কাজ হয়েছে তার একটি প্রামাণ্য চিত্রও শ্রী কে চন্দ্রশেখর রাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। সেচ ও জল সংরক্ষণে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয় সে সম্পর্কেও আলোচনা হয় এদিনের বৈঠকে। এই আইনের আওতায় বনায়ন তথা বনসৃজন প্রকল্পে নির্দিষ্ট তহবিলের অর্থ সদ্ব্যবহারের লক্ষ্যে একটি কৌশলসূত্র উদ্ভাবনের প্রস্তাব দেন তিনি। এক্ষেত্রে রাজ্য সরকারের বনায়ন প্রকল্প ‘হরিৎহারম’-এর প্রসঙ্গটিও তিনি উত্থাপন করেন পর্যালোচনা বৈঠকে। দেশের সবক’টি অঞ্চলকে ‘শস্য কলোনি’তে রূপান্তরের প্রস্তাব দেন তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী। তাঁর এই প্রস্তাব ও পরামর্শের বিশেষ প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই একই উদ্দেশ্যে বাস্তবায়িত হচ্ছে ‘সয়েল হেল্‌থ কার্ড’ কর্মসূচিটি। তবে, ‘শস্য কলোনি’ সম্পর্কে একটি আদর্শ পরিকল্পনা রচনার জন্য রাজ্য সরকারকে উৎসাহিত করেন তিনি। আগামীকাল নয়াদিল্লির বিজ্ঞান ভবনে ‘স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়া’ আন্দোলনের আনুষ্ঠানিক সূচনা করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। উল্লেখ্য, দেশের ‘স্টার্ট-আপ’ শিল্পোদ্যোগকে উৎসাহ দিতে অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার লক্ষ্যে সরকার ইতিমধ্যেই প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার ডোনার মন্ত্রকেরনিম্নলিখিত প্রকল্পগুলো মার্চ ২০২০ পর্যন্ত চালিয়ে যাওয়ার অনুমোদন দিল: উত্তর-পূর্বাঞ্চলেরপর্যটনের উন্নয়নের জন্য অন্যান্য বিষয়গুলোর পাশাপাশি ‘ প্রোডাক্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচারডেভেলপমেন্ট ফর ডেস্টিনেশন এন্ড সার্কিটস ’ (পি.আই.ডি.ডি.সি.)-এর অধীনে পর্যটনক্ষেত্রে অনাদায়ী ঋণের বিষয়টিও দেখা যেতে পারে| হিসেবে একটি নতুন সরকারি কোম্পানিগঠন করা| সরকার তিন বছর ধরে ট্রাঙ্ক পরিকাঠামোর ইক্যুইটি হিসেবে এস.পি.ভি.-কে২০৩৭.৩৯ কোটি টাকা আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে| যে পরিকাঠামোর মধ্যে প্রদর্শনীকেন্দ্রের অংশ যেমন হলঘর, সম্মেলন কক্ষ, মেট্রো সংযোগ, জাতীয় সড়কের সংযোগ, জমিঅধিগ্রহণ, জল ও পয়প্রণালীর পরিকাঠামো ইত্যাদি রয়েছে| (ঘ) ডি.এম.আই.সি.ডি.সি.এই প্রকল্পের জন্য বার্ষিক ফি অনুসারে নলেজ পার্টনার হিসেবে কাজ করবে, যা ১ শতাংশহারে অভ্যন্তরীণ বৃদ্ধি হবে এবং তা প্রাথমিকভাবে দশ বছরের জন্য সর্বনিম্ন ৫ কোটিটাকা থেকে সর্বোচ্চ ১০ কোটি টাকা বার্ষিক হারে হবে| রেল ও সড়কের মতো মূল পরিকাঠামো ক্ষেত্রগুলির উন্নয়ন ও অগ্রগতি খতিয়ে দেখতে এক পর্যালোচনা বৈঠকে আজ নেতৃত্ব দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রেল স্টেশনগুলির উন্নয়ন ও রূপান্তরের কাজে গতি সঞ্চারের ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই বিষয়টির পরিকল্পনায় রেলের উচ্চাকাঙ্ক্ষাকে আরও উন্নীত করা প্রয়োজন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ ৭১তম স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে লালকেল্লার প্রাকার থেকে জাতিরউদ্দেশে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রীর ভাষণের সংক্ষিপ্তসার নিম্নরূপ : 1. স্বাধীনতা দিবসেআমার প্রিয় দেশবাসীকে অভিনন্দন জানাই। 2. লালকেল্লার এইপ্রাকার থেকে দেশের ১২৫ কোটি মানুষের পক্ষে আমি সেইসব মহান মানুষ, মা এবং বোনেদেরকুর্ণিশ জানাই, যাঁরা দেশের স্বাধীনতা এবং মর্যাদার জন্য অবদান রেখেছেন, যাঁরা বহুকষ্ট ভোগ করেছেন এবং আত্মবলিদান দিয়েছেন। 3. ভারতের স্বাধীনতারজন্য যেসব মহান নারী ও পুরুষ কঠোর পরিশ্রম করেছেন, আমি তাঁদের স্মরণ করি। 4. দেশের বিভিন্নপ্রান্তে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এবং হাসপাতালে মৃত শিশুদের জন্য ভারতেরমানুষ কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে পাশে দাঁড়িয়েছে। 5. এ বছরটি এক বিশেষবছর – ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ৭৫তম বার্ষিকী, চম্পারণ সত্যাগ্রহের শতবর্ষ এবং গণেশউৎসবের ১২৫তম বর্ষ। 6. তখনকার আন্দোলন ছিল‘ভারত ছাড়ো’, কিন্তু আজকের আহ্বান হচ্ছে ‘ভারত জোড়ো’। 10. এক নতুন ভারত গড়তেআমাদেরকে ১২৫ কোটি মানুষের সম্মিলিত শক্তি নিয়ে এগিয়ে যেতে হবে, ছোট-বড় মানুষেরমধ্যে কোন প্রভেদ করা চলবে না। 13. দেশ বদলেছে , বদলে চলেছে , বদলে ফেলা সম্ভব । আমাদের এই বিশ্বাস এবং সঙ্কল্পের সঙ্গে এগিয়ে যেতে। 14. আমাদের অগ্রাধিকারহচ্ছে দেশের নিরাপত্তা। অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তাও আমাদের অগ্রাধিকার। আমাদের মহাসাগরইহোক অথবা সীমান্ত কিংবা সাইবার দুনিয়া, সবক্ষেত্রেই নিরাপত্তার জন্য ভারত সমস্তধরনের শত্রুকে পরাজিত করতে পারে। 15. উর্দি পরিহিতআমাদের নিরাপত্তা বাহিনী বাম উগ্রপন্থা, সন্ত্রাসবাদ, অনুপ্রবেশ এবং শান্তিভঙ্গকারীদের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আত্মত্যাগের সর্বোচ্চ শিখরে পৌঁছেছে। সার্জিক্যালস্ট্রাইক-এর ক্ষেত্রে সমগ্র বিশ্বকে ভারতের শক্তিমত্তা ও প্রভাবের স্বীকৃতি দিতেহয়েছে । 17. যারা আমাদের দেশকেলুঠ করেছে, গরিব মানুষকে লুঠ করেছে, তারা আজ শান্তিতে ঘুমোতে পারবে না। 18. বছরের পর বছর ধরেবেনামি সম্পত্তির মালিকদের বিরুদ্ধে কোন আইন পাশ হয়নি। 19. আজ আমরা ‘সততারউৎসব’ উদযাপন করছি। 20. অভিন্ন পণ্য ওপরিষেবা কর ব্যবস্থা সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়তার ধারণাটি সুস্পষ্ট করেছে। সমগ্রজাতি অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর ব্যবস্থার পাশে দাঁড়িয়েছে এবং এক্ষেত্রে প্রযুক্তিওঅত্যন্ত সহায়ক ভূমিকা নিয়েছে। 21. আজ দেশের দরিদ্রমানুষেরা মূলস্রোতে যুক্ত হচ্ছেন এবং দেশ উন্নয়নের দিকে এগিয়ে চলেছে। 22. সুপ্রশাসন হচ্ছেদ্রুততা এবং কর্মপদ্ধতির সহজীকরণ। 23. সমগ্র বিশ্বেভারতের মর্যাদা বৃদ্ধি পাচ্ছে। সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সমগ্র বিশ্ব আমাদেরসঙ্গে আছে। এই কাজে আমাদের সহায়তা করার জন্য আমি সমস্ত দেশকে ধন্যবাদ জানাই। 24. আমাদের জম্মু ওকাশ্মীরের উন্নয়নের জন্য কাজ করে যেতে হবে। 25. সন্ত্রাসবাদ ওসন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে নরম মনোভাব নেওয়ার কোন প্রশ্নই নেই। 26. গালিতে নয় , গুলিতেও নয় , কাশ্মীরের সমস্যারসমাধান হবে আলিঙ্গনের মধ্য দিয়ে। 27. কালো টাকা এবংদুর্নীতির বিরুদ্ধে আমাদের লড়াই অব্যাহত থাকবে। আমরা প্রযুক্তির মাধ্যমে স্বচ্ছতাআনার চেষ্টা চালাচ্ছি। 28. সন্ত্রাসবাদ ওসন্ত্রাসবাদীদের বিরুদ্ধে নরম মনোভাব নেওয়ার কোন প্রশ্নই নেই। 31. বদলে যাওয়া চাহিদাএবং প্রযুক্তি’র সঙ্গে সঙ্গে কাজের ধরণও বদলে যাচ্ছে। 32. আমরা আমাদেরযুবকবৃন্দকে চাকুরিপ্রার্থী হিসেবে নয় , চাকুরিদাতা হিসেবে সহায়তার উদ্যোগ নিয়েছি। 33. আমি সেইসব মহিলাদেরকথা উল্লেখ করতে চাই , যাঁদের ‘ তিন তালাক ’- এর জন্য অনেক ভোগান্তি সহ্য করতে হয়েছে – আমি তাঁদের সাহসেরপ্রশংসা করি। তাঁদের লড়াইয়ে আমরা পাশে আছি। 34. ভারত হচ্ছে শান্তি , একতা এবং সদ্ভাবনারমিশ্রণ। জাতিবাদ এবং সাম্প্রদায়িকতাকে কোনভাবেই মেনে নেওয়া হবে না। 36. ভারত শান্তি , একতা এবং সদ্ভাবনারভিত্তিতে এগিয়ে চলে । সবাইকে সঙ্গে নিয়ে এগিয়ে চলা আমাদের সভ্যতা এবংসংস্কৃতি। 37. আমরা আমাদের দেশকেউন্নয়নের এক নতুন পথে দ্রুততার সাথে এগিয়ে নিয়ে চলেছি। 38. বিহার , অসম , পশ্চিমবঙ্গ , ওড়িশা এবংউত্তর-পূর্বাঞ্চল সহ পূর্ব ভারতের ওপর আমরা বিশেষ মনোযোগ দিচ্ছি। দেশের এই অঞ্চলটিকেদ্রুত বৃদ্ধিপ্রাপ্ত হতে হবে। 39. আমাদের কৃষকরা কঠোরপরিশ্রম করে রেকর্ড পরিমাণ খাদ্যশস্য উৎপাদন সুনিশ্চিত করেছেন। 40. ৫.৭৫ কোটিরও বেশিকৃষক ‘প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’র আওতায় এসেছেন। 43. বিদ্যুতেরসংযোগবিহীন ১৪ হাজারেরও গ্রামে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়া হয়েছে। 44. ২৯ কোটি জন ধনঅ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। 45. ৮ কোটিরও বেশি যুবককোনরূপ গ্যারান্টি ছাড়াই ঋণ পেয়েছেন। 46. আমরা ভারতের একউজ্জ্বল ভবিষ্যৎ এবং মানুষের কল্যাণের জন্য লড়াই করছি। 48. দুর্নীতিমুক্তভারতের জন্য আমাদের পদক্ষেপের ফলে সুফল পাওয়া যাচ্ছে। 49. ১.২৫ কোটি টাকারসমতুল কালো টাকা উদ্ধার করা হয়েছে। 50. ১.৭৫ লক্ষ ভুয়োকোম্পানিকে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। 52. বিমুদ্রাকরণের ফলেঅনেক বেশি অর্থ ব্যাঙ্কে এসেছে, যার ফলে অর্থনীতিতে গতিসঞ্চার হবে। 53. আমাদের দেশ বিশ্বেরবৃহত্তম যব জনসংখ্যার দেশ। এখনকার সময়টা হচ্ছে তথ্যপ্রযুক্তির এবং আমাদের ডিজিটাললেনদেনের পথে এগিয়ে যেতে হবে। 54. আমাদের সামনে থেকেনেতৃত্ব দিতে হবে, ডিজিটাল অর্থনীতিকে উৎসাহিত করতে হবে এবং ‘ভিম’ অ্যাপকে গ্রহণকরতে হবে। 55. আমরা সহযোগিতামূলকযুক্তরাষ্ট্রীয়তা থেকে প্রতিযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয়তার দিকে এগিয়েছি। 56. প্রাচীন শাস্ত্রেবলা হয়েছে, যদি কোন কাজ নির্দিষ্ট সময়ে সম্পূর্ণ না হয় তাহলে প্রত্যাশিত সুফলপাওয়া যায় না। 57. ভারতকে দলগতভাবেনতুন ভারতের সঙ্কল্প নিতে হবে। 58. আমরা সবাই মিলে এমনএক ভারত গড়ে তুলব, যেখানে দরিদ্র মানুষদের জল এবং বিদ্যুতের সংযোগ সহ পাকা বাড়িথাকবে। 59. আমরা এমন এক ভারতগড়ে তুলব, যেখানে কৃষকরা নিশ্চিন্তে ঘুমোতে যাবেন। তাঁরা আজকের আয়ের দ্বিগুণ আয়করবেন। 60. আমাদের এমন এক ভারতগড়ার সঙ্কল্প নিতে হবে, যেখানে যুবক এবং মহিলাদের তাঁদের স্বপ্ন পূরণের জন্যসমস্তরকম সুযোগ দেওয়া হবে। 61. আমাদের এমন এক ভারতগড়ে তুলতে হবে, যা হবে সন্ত্রাসবাদ, সাম্প্রদায়িকতা এবং জাতিবাদ থেকে সম্পূর্ণমুক্ত। 62. আমরা সবাই মিলে এমনএক ভারত গড়ে তুলব, যেখানে দুর্নীতি ও স্বজনপোষণের কোন জায়গা থাকবে না। 63. আমরা সবাই মিলে এমনএক ভারত গড়ে তুলব, যা হবে পরিচ্ছন্ন, স্বাস্থ্যকর এবং ‘স্বরাজ’-এর স্বপ্ন পূরণকরবে। পাশাপাশি, আজ মরিশাসের জাতীয় দিবসে মুখ্য অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকতে পেরে তিনি মরিশাসবাসীর কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন। তিনি বলেন, ভারতবর্ষের ১২৫ কোটি মানুষের কাছে এটি একটি সম্মান। তাঁরা এই সম্পর্কের যথার্থ মর্যাদা দেয়। তিনি বলেন, দু’দেশই অর্থনৈতিক বিকাশে দু’দেশের সহযোগী এবং এই সম্পর্ক অতুলনীয়। শ্রী মোদী কথা প্রসঙ্গে এও জানান, তার সঙ্গে মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী স্যার অনিরুদ্ধ জগন্নাথের বৈঠক ফলপ্রসূ হয়েছে। বৈঠকের পরিণাম এবং যা সিদ্ধান্তে উপনীত হয়েছে দু’দেশ তা গুরুত্বপূর্ণ। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে নিরাপত্তা জোরদার করার বিষয়ে দু’দেশই তাদের বক্তব্য আদান-প্রদান করেছে। এই আলাপ-আলোচনার একটিই লক্ষ্য – ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলটিকে কি করে আরও মজবুত ও সাফল্যমণ্ডিত করা যায়। এই অঞ্চলে মরিশাসের নেতৃত্বকে মূল্য দেয় ভারতবর্ষ, বলে অভিমত ব্যক্ত করেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মরিশাসের অসামরিক পরিকাঠামোমূলক প্রকল্পে ৫০ কোটি মার্কিন ডলারের ছাড়যুক্ত ঋণ প্রদান করেছে ভারত। এর সঙ্গে ভারতবর্ষ অচিরেই এই দেশে পেট্রোলিয়াম মজুদের আধার এবং বাঙ্কার তৈরি করতে প্রস্তুত। এর ফলে, কেবলমাত্র মরিশাস উপকৃত হবে না, এই দেশ আঞ্চলিক হাব হিসাবেও তার ভূমিকা যথোপযুক্ত করতে পারবে। তিনি আরও বলেন, এক দশক আগে মরিশাসে প্রথম সাইবার শহর গড়ে তোলায় ভারত সহযোগিতা করেছিল। এর অভূতপূর্ব সাফল্য যথেষ্ট বার্তাবহ এবং মরিশাসের অর্থনৈতিক বৈচিত্র্যকরণে সেই দেশের কৌশলী দূরদর্শিতার পরিচয় দিতে পেরেছে এই পদক্ষেপ। ভারত, এবার এই দেশে দ্বিতীয় সাইবার শহর গড়ে তোলায় সাহায্য করবে বলে জানান শ্রী মোদী। পরিকাঠামো ক্ষেত্রে ভারতের সহযোগিতার আরও একটি বড় নিদর্শন আগালেগা দ্বীপ বিকাশের জন্য আজ ভারত – মরিশাসের ঐকমত্যে আসা। পারস্পরিক বোঝাপড়ার গভীরতার পরিচায়ক এই পদক্ষেপ। মহাসাগরীয় অর্থনীতির বিকাশে মরিশাস তার দর্শন কি তাও দেখিয়ে দিয়েছে কার্যপ্রণালীতে, বলে অভিমত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মহাসাগরীয় অর্থনীতিতে সহযোগিতা সংক্রান্ত দু’দেশের চুক্তি দু’দেশেরই বিজ্ঞান ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্বের পরিচায়ক। এই পদক্ষেপ সামুদ্রিক পরিবেশ বোঝার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করবে বলে তিনি মত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য অনুযায়ী, এই সহযোগিতা মহাসাগরীয় অর্থনীতিই নতুন নতুন এলকার বিকাশ ঘটানোর সহায়ক এবং নীল সম্পদের সদ্ব্যবহারও সম্ভব এতে। বিগত কিছু বছরে, দু’দেশই দ্বি-কর প্রদান এড়ানোর নীতিটি সংশোধনের বিষয়ে আলাপ-আলোচনা চালিয়েছে। ঐ নীতি অবমাননা এড়ানোর প্রচেষ্টা দু’দেশের যৌথ অংশীদারিত্বেই নিহিত রয়েছে। শ্রী মোদী জানান, তিনি ঐ দেশের প্রধানমন্ত্রী শ্রী জগন্নাথ’কে আশ্বাস্ত করেছেন এই বলে যে, এই গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রে ভারতবর্ষ কোনও বিপরীত কার্যবিধি গ্রহণ করবে না ভারতের এই শক্তিশালী কৌশলী সহযোগীর বিপরীতে। কর-কাঠামোয় তথ্য আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে মরিশাসের অভূতপূর্ব সহযোগিতার কথাও তিনি কথাপ্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমে জানান। তিনি এও বলেন, সুসংবদ্ধ অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব চুক্তিটি নিয়ে দু’দেশেরই আলাপ-আলোচনা শুরু করা আবশ্যক। কারণ, তিনি এবং মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী মনে করেন, দু’দেশের কৌশলগত অংশীদারিত্বের ভিত হল দু’দেশের নিরাপত্তা সংক্রান্ত সহযোগিতা। কারণ, দুদেশের প্রতি দায়বদ্ধতা যেমন রয়েছে, তেমনই রয়েছে সামুদ্রিক প্রতিবেশীর সঙ্গে নিজ-নিজ দর্শন ভাগ করে নেওয়ার নীতি। এছাড়াও, মরিশাস তাঁর স্বতন্ত্র অর্থনৈতিক অঞ্চল যাতে গড়ে তুলতে পারে সে ব্যাপারে ভারতবর্ষের সমর্থনের আশ্বাস দেন শ্রী মোদী। অন্যান্য জাহাজ ও সরঞ্জাম প্রদান-সহ সময়মতো বিভিন্ন এলাকায়ও মরিশাসকে সাহায্যের আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দু’দেশই একটি বিষয়ে একমত যে আঞ্চলিক সহযোগিতা সামুদ্রিক পরিবেশের শান্তি এবং সমৃদ্ধির সহায়কের ভূমিকা নেবে। এ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী মরিশাসের প্রধানমন্ত্রীকে ভারত মহাসাগরীয় বলয় সমিতির নেতৃত্ব দেওয়ায় তাঁকে ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। তিনি আন্তর্জাতিক মঞ্চে মরিশাস ভারতবর্ষকে সমর্থন করায়ও কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন। আবহাওয়া পরিবর্তন নিয়েও একটি কার্যকরী বৈঠক হয়েছে দু’দেশের মধ্যে বলে মত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। একটি মজবুত জাতীয় কার্যবিধি গ্রহণ করার প্রয়াসে দু’দেশই বদ্ধপরিকর বলে জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা এবং বৈশ্বিক অংশীদারিত্ব দৃঢ়তর করে এই সমস্যার মোকাবিলা করা হবে। পরিশেষে মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী শ্রী অনিরুদ্ধ জগন্নাথ এবং তাঁর দলের সঙ্গে বৈঠক সফল হওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেন শ্রী মোদী। এ প্রসঙ্গে তিনি মরিশাসের জাতীয় দিবস উদযাপন সমারোহ এবং জাতীয় সভায় বক্তব্য রাখার সুযোগ পাওয়ায় উদ্বুদ্ধ বলেও অভিমত ব্যক্ত করেন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৭-র ৭ এবং ৮ অক্টোবর গুজরাট সফর করবেন। ৭ অক্টোবরসকালে প্রধানমন্ত্রী দ্বারকাধীশ মন্দির সফর করবেন। দ্বারকায় তিনি ওখা ও বেইটদ্বারকার মধ্যে একটি সেতু ও অন্যান্য সড়ক উন্নয়ন প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনকরবেন। তিনি সেখানে একটি জনসভাতেও ভাষণ দেবেন। দ্বারকাথেকে প্রধানমন্ত্রী সুরেন্দ্র নগর জেলার চোটিলায় পৌঁছবেন। ‘ইমটেকো’রঅর্থ – ইনোভেটিভ মোবাইল ফোন টেকনলজি ফর কমিউনিটি হেল্‌থ অপারেশন্স (গোষ্ঠীস্বাস্থ্য সংক্রান্ত কাজের জন্য অভিনব মোবাইল ফোন প্রযুক্তি)। এখানেও তিনি এক জনসভায় ভাষণ দেবেন। আমি নিশ্চিত যে, এই কাজ আপনি করতে পারবেন। তারুণ্যে ভরপুর সহ-অধিনায়ক @imVkoholi`কে শুভেচ্ছা জানাই। দেশবাসীর তাঁর কাছ থেকে অনেক প্রত্যাশা রয়েছে। পিচে নামার সঙ্গে সঙ্গে ভারতের জন্য জমকালো সূচনা কর। একদিনের আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে জোড়া দ্বি-শতরানের অধিকারী একমাত্র ব্যাটসম্যান @ImRo45 – এর প্রতিভার অনেক অনুরাগী রয়েছে। আরও একবার আমাদের গর্বিত কর। আমার কনিষ্ঠ বন্ধু @ajinkyarahane88`কে শুভেচ্ছা। এই বিশ্বকাপ চমৎকার হয়ে উঠুক। সুযোগের সম্পূর্ণ সদ্ব্যবহার কর। ব্যাট হাতে শক্তিশালী সুরেশ রায়েনা মাঠে সর্বদাই চঞ্চল থেকেছে। বাউন্সার সহ অন্য বলগুলিকেও মাঠের বাইরে পাঠাও @ImRaina। গ্রেট ট্যুরনামেন্ট @RayuduAmbati। আমি নিশ্চিত তুমি রান সংগ্রহ করতে থাকবে এবং এই প্রতিযোগিতায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেবে। কে স্যর জাদেজা`র অনুরাগী নয়? ভারত`কে জয় এনে দেবে এমন ব্যাটিং – বোলিং – ফিল্ডিং সব ক্ষেত্রেই তোমার সাফল্য দেখতে আমরা উৎসুক হয়ে রয়েছি! @imjadeja। আমি নিশ্চিত, তোমার স্পিন বোলিং ব্যাটসম্যানদের হতবাক করবে এবং আমাদের জয় এনে দেবে। আমার অনেক শুভেচ্ছা। তরুণ প্রতিভা অক্ষর প্যাটেল নিজের ধারালো স্পিন ও বাউন্স বল করে ব্যাটসম্যানদের কাবু করে দিতে পারে। চাপমুক্ত হয়ে নিজের সেরাটা মাঠে উজাড় করে দাও। শুভেচ্ছা @BhuviOfficial! প্রতি ম্যাচে স্যুইং বল করে আমাদের জন্য জয় এনে দাও। সঠিক সময়ে ব্যাটসম্যানদের আউট করে দেওয়ার ক্ষেত্রে তোমার প্রতিভা আমাদের দ্রুত জয় স্থির করে দেবে। তরুণ দ্রুত-গতিসম্পন্ন বোলার মোহিত শর্মা সঠিক লক্ষ্য ও নিশানায় বল করার ক্ষমতা রাখে। মোহিত দলের কাছে এক মূল্যবান সম্পদ। তোমাকেও শুভেচ্ছা। তরুণ ও প্রতিভাবান বন্ধু, মহম্মদ শামী`কে বিশ্বকাপের জন্য আমার শুভেচ্ছা। ভালো করে খেলো, আরও বেশি বেশি উইকেট পাও। স্টুয়ার্ট বিনির সাম্প্রতিক অল-রাউন্ড পারফরমেন্স সকলকে মুগ্ধ করেছে। আমাদের সকলের পক্ষ থেকে তাঁর জন্য শুভকামনা রইল। শুভেচ্ছা @y_umesh। দ্রুত-গতিসম্পন্ন ও রিভার্স স্যুইং বল দিয়ে ব্যাটসম্যানদের প্যাভেলিয়নে পাঠিয়ে দাও। আমি নিশ্চিত, তোমার স্পিন বোলিং প্রত্যেক ব্যাটসম্যানকে হতবাক করবে এবং আমাদের জয় এনে দেবে। আমার শুভেচ্ছা”। দক্ষিণ কোরিয়ার রাষ্ট্রপতির ভারত সফরকালে গত ৯ জুলাই, নতুন দিল্লীতে দু-দেশের মধ্যে এই সমঝোতাপত্রটি স্বাক্ষরিত হয়। উত্তর-পূর্বে স্মার্ট প্রশাসনের এই নতুন অধ্যায়ের অংশ হতে পেরে আমি আনন্দিত। গ্যাংটক, নামচি, পাসিঘাট, ইটানগর ও আগরতলায় ইন্টিগ্রেটেড কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের সূচনা একটি অভিনন্দনযোগ্য পদক্ষেপ। উত্তর-পূর্বের শহরগুলি, তাদের দক্ষ মানবসম্পদ নিয়ে, সমগ্র অঞ্চলের উন্নয়নের কেন্দ্র হিসেবে উঠে আসার ক্ষমতা রাখে। স্মার্ট সিটি অভিযান শহরগুলিকে নিজ ক্ষমতা ও সমস্যাগুলি চিহ্নিত করতে সাহায্য করে। এই অভিযান অনুঘটকের মতো জনমত গ্রহণের মাধ্যমে সমস্যাগুলির স্মার্ট সমাধানসূত্র পেতে সাহায্য করে। স্মার্ট সিটি কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার ডিজিটাল প্রযুক্তি ব্যবহার করে বিভিন্ন রকমের পরিষেবার নেটওয়ার্ককে একত্রিত করে। পুলিশ, পরিবহণ, বিদ্যুৎ, জল, স্বাস্থ্যবিধান এবং জন-নিরাপত্তা ব্যবস্থা সংক্রান্ত দপ্তরগুলির মধ্যে ‘রিয়েল টাইমে’ যোগাযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে এই কেন্দ্রগুলি। আমি বিশ্বাস রাখি যে, সঠিক ব্যবস্থা স্থাপন করা গেলে, প্রশাসকরা আরও ভালোভাবে শহরের ওপর নজরদারি চালাতে এবং সঠিক সময়ে ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারবেন। সারা ভারতে ইন্টিগ্রেডেট কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টার স্থাপনের কাজে গতি আসছে। ১ মার্চ, ২০১৯-এর প্রাপ্ত তথ্যানুযায়ী, দেশ জুড়ে ১৫টি স্মার্ট সিটিতে এই কেন্দ্রগুলি ইতিমধ্যেই কাজ করতে শুরু করেছে। আরও ৫০টি কেন্দ্রের কাজ এগোচ্ছে। আমাকে জানানো হয়েছে যে, অক্টোবর, ২০১৯-এর মধ্যে উত্তর-পূর্ব ভারতে প্রথম স্মার্ট কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারটি সম্পূর্ণভাবে তৈরি হয়ে যাবে। এই ব্যবস্থার একটি মূল উপাদান হল নাগরিকদের সুরক্ষায় ব্যবহৃত সিসিটিভ নজরদারি ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থাটি অপরাধ দমনে সাহায্য করবে। ইন্টেলিজেন্ট ট্র্যাফিক নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থার সাহায্যে যান চলাচল সহজতর হবে। কঠিন বর্জ্য নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাটি শহরগুলির পরিচ্ছন্নতা বৃদ্ধি করবে। স্মার্ট স্ট্রিট লাইটিং ব্যবস্থা রাস্তাঘাটগুলিকে আরও নিরাপদ ও নাগরিক-বান্ধব করে তুলবে। এলইডি ব্যবস্থায় রূপান্তরের মাধ্যমে বিদ্যুতও সাশ্রয় হবে। স্মার্ট শহরগুলিতে গুরুত্বপূর্ণ নাগরিক তথ্য জানানোর সুবিধা থাকবে। ডিজিটাল ভারত অভিযানের একটি গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গ হল সকলের কাছে ডিজিটাল মাধ্যমের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। পাবলিক ওয়াই-ফাই ব্যবস্থা নাগরিকদের কাছে বিনামূল্যে ইন্টারনেট পরিষেবার সুবিধা পৌঁছে দেবে। উত্তর-পূর্ব ভারত হল পরিবেশের দিক থেকে সংবেদনশীল। সেজন্য পরিবেশের ওপর নজরদারি ব্যবস্থা এবং বিপর্যয় নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থাগুলি নাগরিক এবং সরকারকে সঠিক সময়ের মধ্যে তথ্য পৌঁছে দেবে। এটি নাগরিক জীবনের সার্বিক মানোন্নয়ন ঘটাতে সাহায্য করবে। ইন্টিগ্রেটেড কম্যান্ড অ্যান্ড কন্ট্রোল সেন্টারের বিভিন্ন সুবিধার রূপায়ণ ও ব্যবহার বৃদ্ধি হলে, শহরগুলিতে নাগরিকদের জীবনযাপন আরও সহজ হবে। আমাকে জানানো হয়েছে যে, উত্তর-পূর্বে ১০টি স্মার্ট শহরে মোট ১৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৫০০টিরও বেশি প্রকল্প রূপায়িত হতে চলেছে। ৫৯টি এই ধরণের প্রকল্পের কাজের বরাত ইতিমধ্যেই দেওয়া হয়েছে। সিকিমের নামচিতে শহরে সুসংহত জল সরবরাহ প্রকল্প, রাস্তায় এলইডি লাইট ও ফুটপাথের কাজ শুরু হয়ে গেছে বলে আমি আনন্দ বোধ করছি। আমাদের পাহাড়ি শহরগুলিতে জল একটি বিশাল সমস্যার আকার ধারণ করছে। গ্যাংটক, বৃষ্টির জল সংরক্ষণের কাজ শুরু করেছে। তার জন্য স্মার্ট সিটি অভিযানের আওতায় আগরতলার প্রশাসন এই সমস্যা সমাধানের জন্য বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। স্মার্ট রাস্তা এবং ইন্টেলিজেন্ট যান চলাচল ও পরিবহণ নিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা রূপায়ণের মাধ্যমে ইটানগর শহরের মধ্যে সড়ক নেটওয়ার্ক উন্নত করার পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। পাসিঘাট শহরটি নিজের আবাসন, শক্তি নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবসা-বাণিজ্যের ক্ষেত্রে উন্নতিসাধনের জন্য স্মার্ট সিটির বিভিন্ন প্রকল্প গ্রহণ করেছে। সেজন্য প্রত্যেকটি শহর নিজ নিজ সমস্যা চিহ্নিত করেছে এবং এই সমস্যার সমাধানসূত্র পাওয়ার দিকে এগিয়েছে। আমি আনন্দের সঙ্গে লক্ষ্য করেছি যে উত্তর-পূর্ব ভারতের আরও পাঁচটি শহর – গুয়াহাটি, আইজল, কোহিমা, ইম্ফল ও শিলং এই একই দিশায় এগিয়ে চলেছে। স্মার্ট সিটি অভিযানের আওতায় প্রকল্প রূপায়ণের কাজ গতি পেয়েছে। আমরা দৃঢ় বিশ্বাস রাখি যে, আমরা উত্তর-পূর্বের শহরগুলির নাগরিক স্বাচ্ছ্বন্দ্য প্রদানের দিকে দ্রুত এগিয়ে চলেছি। এই সঙ্গেই মন্ত্রিসভা সেকেন্ডারি মার্কেটের পাশাপাশি প্রাথমিক বরাদ্দ বাআই.পি.ও-এর মাধ্যমেও শেয়ার ক্রয়ে বিদেশী পোর্টফোলিও লগ্নিকারকদের অনুমতি দিয়েছে। এই সিদ্ধান্তের ফলে ভারতীয় শেয়ার বাজারগুলির পক্ষে আধুনিকতম প্রযুক্তি এবং বিশ্বসেরা ব্যবস্হাগুলি অবলম্বনের দ্বারা ভারতীয় মূলধনী বাজারের উত্তরোত্তরবিকাশ ত্বরান্বিত হবে। জাপানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রী শ্রী ইতসুনোরি ওনোডেরা সোমবার (২০ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী বলেন, ভারত ও জাপানের সম্পর্কের ক্ষেত্রে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা একটি গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ। উভয় দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার অগ্রগতির তিনি প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুদ্ধ পূর্ণিমা উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “ভগবান বুদ্ধের শিক্ষা একুশ শতকেও সমান প্রাসঙ্গিক। সমাজ থেকে অন্যায় ও দুঃখ-দুর্দশা দূরীকরণের কাজে তিনি নিজেকে উৎসর্গ করেছিলেন। তাঁর করুণার জন্যই তিনি লক্ষ লক্ষ মানুষের কাছে প্রিয় হয়ে উঠেছিলেন। সালোম লেকুলাম আনি সেমিয়া মেয়দ লেহিওৎ পো (ইজরায়েলে আসতে পেরে আমি আনন্দিত)। ইজরায়েল সফরেআসা প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এ হ’ল আমার এক অনন্য সম্মান। কঠোর শ্রম এবংউদ্ভাবনী শক্তির সাহায্যে তা আরও পূর্ণতা লাভ করেছে। সমস্ত রকম প্রতিকূলতাসত্ত্বেও আপনারা এগিয়ে গেছেন অগ্রগতির পথে এবং চ্যালেঞ্জকে পরিবর্তিত করেছেন একবিশেষ সুযোগে। আপনাদের এই সাফল্যকে ভারত সাধুবাদ জানায়। এন্টিবি’রসেই সংঘর্ষের সময় থেকে ঠিক ৪১টি বছর অতিক্রম করে আজ আবার এসেছে ৪ জুলাই-এর বিশেষদিনটি। আপনাদেরদেশে এই ধরণের বীর ও সাহসী যোদ্ধারাই তরুণ প্রজন্মের কাছে প্রেরণাস্বরূপ। সভ্যতারইতিহাসের দিক দিয়ে ভারত সুপ্রাচীন হলেও জাতি হিসাবে সে এখনও নবীন। ভারতের মোটজনসংখ্যার ৮০ কোটির বয়স এখনও ৩৫ বছরের নীচে। ভারতের চালিকাশক্তি হ’ল দক্ষ ও মেধাবীতরুণরাই। দেশের শিল্প, অর্থনীতি, বাণিজ্য প্রচেষ্টা এমনকি বিশ্ব মুখিনতার দিকথেকেও ভারতের রূপান্তরের যে স্বপ্ন আমার রয়েছে, তাকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কান্ডারীহলেন তাঁরাই। ভারত তারসার্বিক বিকাশ ও নিরন্তর অগ্রগতির পথে ইজরায়েল’কে এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলেইমনে করে। উন্নয়নের যাত্রাপথে আমাদের এই দুটি দেশের যে সাধারণ চ্যালেঞ্জগুলি রয়েছেতার মোকাবিলায় প্রয়োজন বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন এবং উচ্চতর কারিগরি শিক্ষারওপর আরও বেশি করে জোর দেওয়া। এই ক্ষেত্রগুলিতে দু’দেশের উচ্চ দক্ষতাসম্পন্নযুবসমাজ এবং শিল্পোদ্যোগীদের সৃজনশীলতা ও চিন্তাভাবনাকে যুক্ত করা সম্ভব। মিলিতঅর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে এক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলা ছাড়াওসন্ত্রাসবাদের মতো সাধারণ হুমকিগুলির মোকাবিলায় আমাদের দু’দেশের সমাজকে সুরক্ষিতকরে তোলার প্রচেষ্টাতেও আমরা বর্তমানে সহযোগিতাবদ্ধ। এইক্ষেত্রগুলিতে নিরন্তর এক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীনেতানিয়াহু’র সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময়ের সুযোগ আমি লাভ করব। আমাদের দুটিদেশের জনসাধারণ তথা সমাজের কল্যাণে এই যাত্রাপথে পরস্পরের সঙ্গী হওয়ার জন্য আমরাযথেষ্ট রোমাঞ্চিত। আমাদের এই অগ্রগতির পথে আমার লক্ষ্য হবে ইজরায়েলের সঙ্গে স্থায়ীও শক্তিশালী অংশীদারিত্বের বন্ধনকে আরও জোরদার করে তোলা। আমাকে এত সুন্দরভাবেস্বাগত জানানোর জন্য আমি আরও একবার ধন্যবাদ জানাই আপনাদের সকলকেই। সাধারণতন্ত্র দিবস উদযাপন উপলক্ষে দিল্লিতে উপস্থিত ট্যাবলো শিল্পী,আদিবাসী অতিথি, জাতীয় সমর শিক্ষার্থী বাহিনীর সদস্য এবং এনএসএস স্বেচ্ছাসেবকদেরসঙ্গে এক আলাপচারিতায় মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনমূর্তি লন-এ সমবেত জাতীয় সমর শিক্ষার্থী বাহিনীর সদস্যদের কাছে ভারতেরবৈচিত্র্যের বিষয়টি বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, আমাদের এমন অনেক বিষয়ইরয়েছে, যা আমরা একে অন্যের কাছ থেকে শিখে নিতে পারি। আমাদের চারপাশে যে পরিবর্তনঘটে চলেছে, তাকে গ্রহণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন তিনি। দেশে রূপান্তরমুখীপরিবর্তন ঘটানোর ক্ষমতা ভারতের যুব সমাজের রয়েছে বলে বিশেষ আস্থা ও বিশ্বাস ব্যক্তকরেন প্রধানমন্ত্রী। পরিচ্ছন্নতার বিষয়টিও এদিন উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর আলাপচারিতাকালে। তিনিবলেন, মহাত্মা গান্ধীর স্বচ্ছ ভারত গঠনের স্বপ্নকে সাকার করে তোলার দায়িত্ব আমাদেরসকলের। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা জলসম্পদ ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়নমূলক সহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে একটি ‘মউ’ সাক্ষরের জন্য অনুমতি দিয়েছে। এই দ্বি-পাক্ষিক সহযোগিতা উভয় দেশকেই যথাযথভাবে জলের ব্যবহার, ক্ষুদ্র-সেচ, বর্জ্য জলের পুনর্নবীকরণ ও পুনর্ব্যবহার, জলকে লবণমুক্ত করা, পাথুরে স্তরে জলের পুনর্নবীকরণ প্রযুক্তি সমূহ সহ স্বাভাবিক পদ্ধতিতে জল সংরক্ষণ প্রযুক্তিকে শক্তিশালী করার ক্ষেত্রে সুবিধা দেবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তা – পালেমব্যাঙ্গে অনুষ্ঠিত অষ্টদশ এশিয়ান গেমস্‌-এ পুরুষদের টেনিসে ডাবলস্‌ বিভাগে স্বর্ণ পদক জয়ী রোহন বোপান্না এবং দিভিজ শারণ’কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “রোহন বোপান্না ও দিভিজ শারণ যখন একসঙ্গে খেলে, তখন তাঁদের থেকে অসাধারণ টেনিস আশা করা হয়। পুরুষদের ডাবলস্‌ বিভাগে স্বর্ণ পদকের জন্য তাঁরাই যোগ্য ছিলেন। যোজনারআওতায় প্রদেয় অর্থের পরিমাণ ছিল খুবই সামান্য এবং এক বছরের বেশি সময়কাল ধরে নতুনকরে আর কোনও অর্থ নেওয়া হচ্ছিল না। গোয়ার মুখ্যমন্ত্রী মনোহর পারিকরের প্রয়াণে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গভীর শোক প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে গোয়ার পানাজিতে, রবিবার, ১৭ই মার্চ মনোহর পারিকরের দুঃখজনক প্রয়াণে শোক প্রকাশ করে তাঁর স্মরণে দু’মিনিট নীরবতাও পালন করা হয়। মন্ত্রিসভা, ১৮ই মার্চ সমস্ত রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল সহ দিল্লি এবং গোয়ার সর্বত্র জাতীয় পতাকা অর্ধনমিত রাখার পাশাপাশি, দেশে একদিনের রাষ্ট্রীয় শোক পালনের বিষয়টিতেও সম্মতি দিয়েছে। শ্রী মনোহর পারিকরের স্মৃতিতে গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে মন্ত্রিসভা নিম্নলিখিত শোক প্রস্তাবটি গ্রহণ করেছে: “গোয়ার পানাজিতে ১৭ই মার্চ সন্ধ্যায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী মনোহর পারিকরের দুঃখজনক প্রয়াণে মন্ত্রিসভার পক্ষ থেকে গভীর শোক প্রকাশ করা হচ্ছে। তাঁর প্রয়াণে দেশ একজন প্রবীণ ও বিশিষ্ট নেতাকে হারাল, যাঁকে ভালোবেসে সবাই তাঁকে সাধারণের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে অভিহিত করত। রাজনীতিতে যোগ দেওয়ার পূর্বে কিশোর বয়সেই শ্রী পারিকর রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘ বা আরএসএস-এ যোগ দেন। আইআইটি মুম্বাই থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি অর্জনের পর তিনি গোয়ার মাপুসায় আরএসএস-এর কাজে যুক্ত হয়ে পড়েন এবং ২৬ বছর বয়সেই সঙ্ঘচালক হয়ে ওঠেন। ভারতীয় জনতা পার্টির একজন সদস্য হিসেবে শ্রী পারিকর ১৯৯৪ সালে গোয়া বিধানসভায় নির্বাচিত হন। এরপর, ২০০২-এর তেসরা জুন তিনি পুনরায় রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে পুনর্নিবাচিত হন এবং ২০০৫-এর দোসরা ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত এই পদে আসীন ছিলেন। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে তিনি তৃতীয়বার ২০১২-র ৯ই মার্চ দায়িত্ব গ্রহণ করেন এবং ২০১৪-র ৮ই নভেম্বর পর্যন্ত এই দায়িত্বে আসীন ছিলেন। তাঁর সরলতা এবং একজন ব্যতিক্রমী প্রশাসক হিসেবে সক্ষমতার জন্য শ্রী পারিকর স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। আধুনিক গোয়া নির্মাণে তাঁর অবদান এবং ভারতীয় সেনাবাহিনীর আধুনিকীকরণ তথা প্রাক্তন সেনাকর্মীদের কল্যাণে অসামান্য অবদানের জন্য তিনি স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। তাঁর দুই ছেলে বর্তমান। যুক্তরাজ্যের বিদেশ ও কমনওয়েলথ বিষয় সংক্রান্ত বিদেশ সচিব মিঃ বরিস জনসন বুধবার এখানে এক সাক্ষাৎকারে মিলিত হন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। শ্রী মোদীবলেন, ২০১৬-র নভেম্বর মাসে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী তেরেসা মে’র ভারত সফরেরপরিপ্রেক্ষিতে ভারত-যুক্তরাজ্য সম্পর্কের ভবিষ্যৎ রূপরেখার একটি কাঠামো প্রস্তুতকরা সম্ভব হয়েছে। বর্তমানে এ ধরণের ১ হাজার ৫৪টি নথিভুক্ত পরিবার রয়েছে। নতুন প্রস্তাবানুযায়ী, জম্মুর এই সব বিতাড়িত পরিবার কাশ্মীর উপত্যকা ছেড়ে চলে আসা মানুষজনের মতো মাসে জনপ্রতি আড়াই হাজার টাকা (পরিবার পিছু মাসে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টাকা) এবং রেশন ও পশু খাদ্য বাবদ ত্রাণ সহায়তা পাবে। ২০১৬ ব্যাচের ৪১ জন অফিসার ট্রেনি আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎকরেন। তাঁদেরসঙ্গে কথাপ্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রীফরেন সার্ভিসের আধিকারিকদের সবদিক দিয়ে অবহিত এবংবিশ্ব পরিপ্রেক্ষিত অনুযায়ী চিন্তাভাবনার উপযোগী হতে আহ্বান জানান। তিনি অন্যান্যসার্ভিসে তাঁদের সতীর্থদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতেও আহ্বান জানান যাতে, স্বদেশের নানাবিষয় সম্পর্কে তাঁরা অবহিত থাকতে পারেন। বিজ্ঞান ওপ্রযুক্তি সম্পর্কে যে উপস্থাপনাটি পেশ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে, তাতে শিক্ষারসুযোগ ও অধিকার, কর্মসংস্থান ও স্টার্টআপ এবং বৈজ্ঞানিক কাজকর্মকে সহজতর করে তোলারপন্থা-পদ্ধতি সম্পর্কে সচিবদের চিন্তাভাবনা প্রতিফলিত হয়। জ্বালানির উৎসএবং ব্যয়সাশ্রয়ী জ্বালানি সম্পর্কে সচিবদের প্রস্তাব ও পরামর্শ পেশ করা হয়জ্বালানি ও পরিবেশ বিষয়টির ওপর উপস্থাপনাকালে। প্রধানমন্ত্রীরসঙ্গে সচিবদের এই আলোচনা বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন দপ্তরের কেন্দ্রীয় মন্ত্রীএবং নীতি আয়োগের আধিকারিকরা। বর্তমানে এই কৃষি মহাবিদ্যালয়টি স্থানীয় কলা ও বিজ্ঞান মহাবিদ্যালয়ের (এসকেভিটি কলেজ) ভাড়া করা একটি বাড়িতে অস্থায়ীভাবে অবস্থিত। জমি হস্তান্তরের পর এই কৃষি মহাবিদ্যালয়টির জন্য একটি স্থায়ী ক্যাম্পাস গড়ে তোলা সম্ভব হবে। আর্জেন্টিনায় আয়োজিত ২০১৮-র গ্রীষ্মকালীন যুব অলিম্পিক্সের পদকজয়ীদের সঙ্গে দেখা করে তাঁদের অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আগামী অলিম্পিক্সে বিজয়ী হওয়ার জন্য নিজেদের লক্ষ্যের দিকে স্থির থেকে কঠিন পরিশ্রম করার পরামর্শ দেন। সরকার খেলোয়াড়দের পর্যাপ্ত সুযোগ-সুবিধা দেবে বলেও প্রধানমন্ত্রী তাঁদের আশ্বাস দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, খেলোয়াড় যুবক-যুবতীদের তাঁদের স্কুল এবং গ্রামের ছোট ছেলে-মেয়েদের খেলাধূলার ব্যাপারে উৎসাহিত করা উচিৎ। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন শ্রী নরেন্দ্র মোদী ‘ভাইব্র্যান্ট গুজরাট’ শুরু করেছিলেন। ২০০৩ সালে শুরু হওয়ার পর থেকে এই শীর্ষ সম্মেলন ভারতের সমস্ত রাজ্যের অংশগ্রহণের পাশাপাশি, রাজ্যগুলিতে বিনিয়োগের প্রসারে বিশ্বব্যাপী যোগসূত্র স্থাপনের এক উপযুক্ত মঞ্চে পরিণত হয়েছে। সম্মেলনে বিশ্ব আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পাশাপাশি, জ্ঞানের আদান-প্রদানের ক্ষেত্রে আরও বৈচিত্র্য আনা এবং কার্যকর অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। · বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, ইঞ্জিনিয়ারিং ও গণিত নিয়ে আন্তর্জাতিক স্তরের আলোচনাসভার আয়োজন করা হচ্ছে। · ভাইব্র্যান্ট গুজরাট গ্লোবাল ট্রেড শো। এই ফ্ল্যাগশিপ অনুষ্ঠানে ২ লক্ষ বর্গমিটার এলাকা জুড়ে প্রদর্শনীর ব্যবস্থা রয়েছে। ২৫টি শিল্পক্ষেত্র প্রদর্শনীতে তাদের সামগ্রী তুলে ধরছে। · ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সাফল্যগুলিকে তুলে ধরতে সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। এই কর্মসূচির সাফল্য সুনিশ্চিত করতে সরকারের গৃহীত পদক্ষেপগুলি নিয়েও আলোচনা হবে। · প্রতিরক্ষা ও বিমান সংক্রান্ত ক্ষেত্রে যুক্ত শিল্প সংস্থাগুলির সুযোগ-সুবিধা নিয়ে সেমিনারের আয়োজন করা হচ্ছে। উদ্দেশ্য, গুজরাট তথা ভারতে প্রতিরক্ষা ও বিমানচালনা ক্ষেত্রে যে সুযোগ-সুবিধা রয়েছে সে বিষয়ে সম্মেলনে অংশগ্রহণকারীদের সচেতন করা। · গতিশীলতা-নির্ভর শহরাঞ্চলীয় উন্নয়ন। আধুনিক প্রযুক্তি, গাড়ি পার্কিং-এর সুবন্দোবস্ত, বিদ্যুৎচালিত যানবাহন ও বিগ ডেটার সমন্বয়ে শহরাঞ্চলীয় পরিবহণ ব্যবস্থার উন্নয়ন তথা দ্রুতগতির যানবাহন নিয়ে আলোচনা। · নতুন ভারত গড়ে তোলার স্বার্থে প্রযুক্তি-নির্ভর কৃষিকাজ। · বস্ত্র সম্মেলন – নতুন ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যে বস্ত্রক্ষেত্রের সম্ভাবনাগুলি খুঁজে বের করা। এই প্রকল্পটি তিন মাসের জন্য উন্মুক্ত থাকবে আর এক্ষেত্রে এক মাস মেয়াদ সম্প্রসারণের সুযোগ আছে। উন্নত স্বেচ্ছা অবসর প্রকল্প রূপায়ণের পর, বেসরকারি ক্ষেত্রের সঙ্গে যৌথ উদ্যোগে সংস্থাটির পুনর্গঠনের চেষ্টা হবে আর তা ব্যর্থ হলে এই সংস্থার বিলগ্নীকরণ করা হবে। উন্নত এই স্বেচ্ছা অবসর প্রকল্প রূপায়ণের ফলে এইচ.ডি.পি.ই.এল. – এর জনবল যথেষ্ট হ্রাস পাবে এবং সংস্থার আকার কমাতে সাহায্য করবে। বর্তমান স্বেচ্ছা অবসর প্রকল্পটি পুরোনো প্রাক্ সংশোধিত হারের ভিত্তিতে করা আর তাই উন্নত স্বেচ্ছা অবসর প্রকল্প চালু করার ফলে এইচ.ডি.পি.ই.এল. – এর কর্মীদের মধ্যে যাঁরা এটি বেছে নেবেন তাঁদের ক্ষেত্রে অবসরকালীন সুযোগ-সুবিধা আরও বেশি প্রাপ্য হবে। মন্ত্রিসভার এই সিদ্ধান্ত কর্মীদের কল্যাণ ও তার সঙ্গে সঙ্গে রাজকোষে নিয়মিত হারে ঘাটতি কমাতে সাহায্য করবে। ১৯৭৩ সালের পোর্ট ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কস – এর সঙ্গে মিশে যায় আর এটি অ্যান্ড্রু ইয়ুল সংস্থার নিয়ন্ত্রণে আসে। ১৯৮৪ সালে এই সংস্থার জাতীয়করণ হয় এবং এর নাম হয় হুগলি ডক অ্যান্ড পোর্ট ইঞ্জিনিয়ার্স লিমিটেড। এই সংস্থার দুটি ইউনিট-ই হুগলি নদীর তীরে সালকিয়া ও নাজিরগঞ্জে অবস্থিত এবং দুটি-ই প্রচুর লোকসানে চলছে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী স্বামী বিবেকানন্দের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদনকরেছেন। ভারত ও ব্রিটেনের মধ্যে আইন ও বিচার ক্ষেত্রে সহযোগিতা এবং একটি যৌথ পরামর্শদাতা কমিটি গঠনের বিষয়ে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরে অনুমোদন জানালো প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (১৯শে অক্টোবর, ২০১৮) ড্রুক নামরুপ শোগপা দলের সভাপতি ডঃ লোতে শেরিং-এর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। ভুটানের তৃতীয় সাধারণ নির্বাচনে ডঃ শেরিং-এর দল বিজয়ী হওয়ায় এবং ডঃ শেরিং নিজে জাতীয় পরিষদে নির্বাচিত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁকে অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী মোদী ডঃ লোতে শেরিং-কে ভারতে আসার আমন্ত্রণ জানান। ডঃ লোতে শেরিং প্রধানমন্ত্রী মোদীকে তাঁর শুভেচ্ছা ও শুভকামনার জন্য ধন্যবাদ জানান এবং যথাশীঘ্র সম্ভব ভারতে আসার আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। রিও,২০১৬ প্যারালিম্পিক্‌স-এ যথাক্রমে সোনা ও ব্রোঞ্জ পদক জয়ী মারিয়াপ্পান থাঙ্গাভেলু এবংবরুণ সিং ভাতিকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। “ভারতআজ বিশেষভাবে সম্মানিত! বুধবার প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে দোকান ও বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান (নিয়োগ ও নিযুক্তির শর্তাবলী) সংক্রান্ত মডেল বিলটি বিবেচনার জন্য উপস্থাপিত করা হয়। এই মডেল বিলটির কয়েকটি বৈশিষ্ট্য হল : · উৎপাদন ও নির্মাণ প্রতিষ্ঠান ছাড়া যে সমস্ত বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানে ১০ বা তার বেশি সংখ্যক কর্মী কাজ করেন সেগুলির ক্ষেত্রেই এটি প্রযোজ্য হবে। · কোন দোকান বা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোন ক্যান্টিন, প্রাথমিক চিকিৎসা সহ বিভিন্ন ব্যবস্থার অভাব থাকলে অন্যান্য দোকান ও প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে সহযোগিতাক্রমে সমষ্টিগতভাবে তা গড়ে তোলা যাবে। · জাতীয় ছুটির দিন ছাড়াও কর্মীদের সবেতন ছুটি দিতে হবে পাঁচটি উৎসবের দিনে। · তথ্যপ্রযুক্তি, জীবপ্রযুক্তি এবং গবেষণা ও উন্নয়নের কাজে যুক্ত সুদক্ষ কর্মীদের প্রতিদিন ৯ ঘন্টা কাজ করার বাধ্যবাধকতা থেকে প্রয়োজনে ছাড় দিতে হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ শ্রীলঙ্কার সেন্ট্রাল প্রভিন্সেরডিকোয়া’য় ভারতীয় সহযোগিতায় নির্মিত এক হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী সিংহল কর্মী কংগ্রেস এবং তামিল প্রগতিশীল মোর্চারপ্রতিনিধিদের সঙ্গেও মিলিত হন আলাপচারিতায়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে বলেন যে, শ্রীলঙ্কা সফরের এই সুযোগ তাঁর কাছে একআনন্দের উপলক্ষ। উৎসাহ ও আন্তরিকতার সঙ্গে যেভাবে তাঁকে স্বাগত জানানো হয়েছে,এজন্য তিনি কৃতজ্ঞ। শুধু তাই নয়, প্রথম ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী হিসাবে এই সুন্দর দেশসফরের সুযোগ তাঁর কাছে এক বিরাট সম্মান বলে তিনি মনে করেন। কিন্তু জনসাধারণেরসঙ্গে এইভাবে মিলিত হতে পেরে তিনি নিজেকে আরও বেশি সম্মানিত বলে মনে করছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রীলঙ্কার উর্বর ভূমিতে জন্ম বিশ্ব বিখ্যাত সিংহলীচা-এর। শ্রীলঙ্কাবাসীদের অক্লান্ত পরিশ্রমেই এই চা-এর সুগন্ধে আমোদিত বিশ্বের কোটিকোটি মানুষ। বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম চা রপ্তানিকারক দেশের সম্মান অর্জন করেছেশ্রীলঙ্কা। আর এইভাবেই শ্রীলঙ্কার চা শিল্পের সঙ্গে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়েরয়েছেন শ্রীলঙ্কার ভারতীয় বংশোদ্ভূত তামিল জনসাধারণ। এই কারণে শুধুমাত্রশ্রীলঙ্কাতেই নয়, শ্রীলঙ্কার বাইরেও তাঁদের অমূল্য অবদান আজ সর্বজন স্বীকৃত। তাই, তাঁদেরও আজ শ্রদ্ধা ও সম্মানেরসঙ্গে স্মরণ করার দিন। শ্রী মোদী বলেন, তামিল জনসাধারণকে এখানে বহু প্রজন্ম ধরে প্রতিকূলতারবিরুদ্ধে সংগ্রাম করতে হয়েছে। কিন্তু কখনই তাঁরা ভেঙে পড়েননি। বরং সাহসের সঙ্গেইশান্তিপূর্ণ উপায়ে অধিকার প্রতিষ্ঠার সংগ্রামে তাঁরা যুক্ত থেকেছেন। সৌম্যমূর্তিথোন্ডামানের মতো সংগ্রামী নেতাদের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তামিলজনসাধারণের অধিকার প্রতিষ্ঠা, বিকাশ এবং অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যে তিনিনিরলসপরিশ্রম করে গেছেন। বিশ্বের এক প্রাচীনতম ভাষাতেই কথা বলেনতাঁরা। বহুভাষাভাষী এক সমাজ ব্যবস্থায় সকলে শান্তি ও সম্প্রীতির মধ্যে বসবাস করছেন এর থেকে বেশিভাল বোধ হয় পৃথিবীতে আর কিছু হতে পারে না। তাই বৈচিত্র্য উদযাপনেরই একটি বিষয়,সংঘাত বা সংঘর্ষের নয়। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের অতীত বরাবরই সম্প্রীতির মধ্য দিয়ে পরিণতি লাভকরেছে। জাতক সহ বেশ কিছু বৌদ্ধগ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে অগস্ত্য মুনির, যাঁকে তামিলভাষার জনক বলে মনে করা হয়। সিংহলী নায়ক ক্যান্ডির মহারাজের মাতুলালয় সূত্রেসম্পর্ক ছিল মাদুরাই ও তাঞ্জোরের নায়ক রাজাদের সঙ্গে। তামিল ও সিংহলী ছিল তখনরাজভাষা। ভারতীয়বংশোদ্ভূতরা যখন কাছের ও দূরের বিশ্বের নানা প্রান্তে সাফল্যের নজির সৃষ্টি করেন,তখনও আমরা উল্লসিত হই। এই ধরণের আরও বহু উজ্জ্বল সাফল্য যে আগামীদিনেও আমরা দেখতেপাব, সে প্রত্যাশা রয়েছে আমাদের। ভারত ও শ্রীলঙ্কা এই দুটি দেশের সরকার ওজনসাধারণের মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ সংযোগ রক্ষা করে চলেছেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত তামিলজনসাধারণ। কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে আমরা গড়ে তুলতে চাই এমনইএক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক, যা সকল ভারতীয় এবং শ্রীলঙ্কাবাসীর জীবনকে স্পর্শ করেযাবে, গড়ে তুলবে এক বিশেষ অবদানের স্তম্ভ। শ্রীলঙ্কাবাসী তামিলরা ভারতের সঙ্গে এইবন্ধনকে সর্বদাই জাগ্রত করে রেখেছেন। তাঁদের অনেকেরই বন্ধু-বান্ধব এবংআত্মীয়-স্বজনের বাসভূমি হ’ল ভারত। তাই ভারতীয় উৎসব পালিত হয় এদেশেও। আমাদেরসংস্কৃতিকে তাঁদের নিজেদের সংস্কৃতি বলেই মনে করেন। তাঁদের হৃদয়ের গভীরে রয়েছেভারতের প্রতি ভালোবাসা। আবেগের এই উষ্ণতার পূর্ণ মর্যাদা দেয় আমাদের দেশ। তাইশ্রীলঙ্কাবাসীর আর্থ-সামাজিক বিকাশে নিরলসভাবে কাজ করে যাব আমরা। শ্রী মোদী বলেন, শ্রীলঙ্কার ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের জীবনযাত্রার মান আরও উন্নতকরে তুলতে পাঁচ বছর মেয়াদী এক জাতীয় কর্মসূচি গ্রহণ করেছে শ্রীলঙ্কা সরকার। তাদেরএই প্রচেষ্টায় পূর্ণ সমর্থন জানিয়ে যাবে ভারত। শ্রীলঙ্কা সরকারের সঙ্গে মিলিতভাবেশিক্ষা, স্বাস্থ্য এবং সমষ্টি উন্নয়নের ক্ষেত্রে বহু কল্যাণমূলক প্রকল্প ওকর্মসূচি ভারতের পক্ষ থেকে রূপায়িত হচ্ছে এই দেশে। সম্ভাবনাময় মেধাবীছাত্রছাত্রীরা যাতে তাঁদের পঠন-পাঠন চালিয়ে যেতে পারেন, সেই লক্ষ্যে ১৯৪৭ সালে গঠনকরা হয় সিংহল এস্টেট ওয়ার্কার্স এডুকেশন ট্রাস্ট অর্থাৎ সিইডব্লিউইটি। এর আওতায়প্রতি বছর ভারত ও শ্রীলঙ্কায় পঠন-পাঠনের জন্য প্রায় ৭০০টি বৃত্তির ব্যবস্থা করেছিআমরা। এর ফলে, উপকৃত হয় এদেশের ছেলেমেয়েরা। এমনকি, জীবিকার কাজে ও দক্ষতা বৃদ্ধিরক্ষেত্রে সহায়তার লক্ষ্যে আমরা স্থাপন করেছি বৃত্তিমূলক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র এবং১০টি ইংরাজী ভাষায় অনুশীলন কেন্দ্র তথা বেশ কিছু গবেষণাগার। একইভাবে বিদ্যালয়স্তরে আমরা স্থাপন করেছি কম্প্যুটার এবং বিজ্ঞান গবেষণাগার। ভারতীয়সাহায্য ও সহযোগিতায় গড়ে উঠেছে এই হাসপাতাল, যেখানে এই অঞ্চলের স্বাস্থ্য ব্যবস্থাও পরিচর্যার ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা রয়েছে। শ্রীলঙ্কায় ১৯৯০জরুরি অ্যাম্বুলেন্স পরিষেবা প্রসারের কথাও ঘোষণা করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।বর্তমানে শ্রীলঙ্কার পশ্চিম ও দক্ষিণাঞ্চলে এই ব্যবস্থা চালু রয়েছে, যা ক্রমশছড়িয়ে দেওয়া হবে দেশের অন্যান্য অঞ্চলগুলিতেও। প্রসঙ্গত, যোগ ও আয়ুর্বেদের মতো ভারতের সার্বিক স্বাস্থ্য পরিচর্যারঐতিহ্যের কথাও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী বলেন, শ্রীলঙ্কায় এক উদ্ভাবনমূলক ভারতীয় আবাসন প্রকল্প গড়ে তোলারঅঙ্গ হিসাবে এই দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে নির্মাণ করা হচ্ছে ৪ হাজারটি বাসস্থান। যাঁরাএই প্রকল্পের সুফল ভোগ করবেন, তাঁরা বাসস্থানের পাশাপাশি সংশ্লিষ্ট জমির মালিকানাওভোগ করতে পারবেন। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে ভারতের সাহায্য ও সহযোগিতার প্রতিশ্রুতিহিসাবে এই প্রকল্পের আওতায় আরও ১০ হাজার বাড়ি তৈরির কথাও এদিন ঘোষণা করেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। এর আগে ঐদিনই তিনি কলম্বো ও বারাণসীর মধ্যে এয়ার ইন্ডিয়ার বিমানপরিবহণ সূচনার কথাও ঘোষণা করেন। এর মাধ্যমে শ্রীলঙ্কাবাসীরা বারাণসী সফর করেদেবাদিদেব শিবের আশীর্বাদ প্রার্থনা করার সুযোগ পাবেন বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি । শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে শ্রীলঙ্কাবাসীদের যাত্রাপথে ভারত এবং ভারতেরজনসাধারণ যে সর্বদাই সঙ্গী হবেন, একথাও এদিন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় ঘোষণা করেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। ভাষণের শেষে সমবেত সকলকে ধন্যবাদ জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তাছাড়াকেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা জম্মু-কাশ্মীরের জন্য প্রধানমন্ত্রীর উন্নয়ন প্যাকেজ ২০১৫–“পাঁচ বছর ধরে জেলা হাসপাতাল, উপ-জেলা হাসপাতাল এবং প্রাথমিকস্বাস্থ্যকেন্দ্রগুলোতে পরিকাঠামো তৈরির জন্য সহায়তা বৃদ্ধি” — কেও০১ এপ্রিল ২০১৭ থেকে ৩১ মার্চ ২০২০ পর্যন্ত বৃদ্ধি করার অনুমোদন দিয়েছে, যার জন্যব্যয় বরাদ্দ সহায়তার পরিমাণ ধরা হয়েছে ৬২৫.২০ কোটি টাকা, যা সম্পূর্ণরূপেকেন্দ্রীয় তহবিলের প্রকল্প| ও ডি.এইচ.-গুলোকে যুক্ত করারসম্ভাবনা, যাতে সুরক্ষার বিচ্ছিন্নতা ঠেকিয়ে ধারাবাহিকতার উন্নয়ন ঘটানো যায়|সাধারণ এন.সি.ডি.-গুলোর জন্য বিনামূল্যের সর্বজনীন স্ক্রিনিং সহ বারোটি পরিষেবারপ্যাকেজ| ৭.উপ-স্বাস্থ্যকেন্দ্রপর্যায়ে ‘ মধ্য-পর্যায়ের স্বাস্থ্য পরিষেবাপ্রদানকারী ’ নিয়োগ করা, যিনি প্রাথমিক স্বাস্থ্যসুরক্ষা ও জন-স্বাস্থ্য সম্পর্কিত দক্ষতায় প্রশিক্ষিত থাকবেন| ৮.আয়ুষের সংহতির মাধ্যমেসুস্থ থাকার ওপর জোর দেওয়া এবং রোগের ক্ষেত্রে বিশেষত দুরারোগ্য রোগের ক্ষেত্রেপ্রতিরোধ ও স্বাস্থ্য সম্পর্কিত প্রচারে জোর দেওয়া| ৯.দক্ষতাকে উন্নীত করার জন্যপ্রধান স্বাস্থ্য সূচক ও অন্যান্য ক্ষেত্রের উচ্চাভিলাষী লক্ষ্যমাত্রা স্থির করা| ১১.স্বাস্থ্য ও সুস্থতার প্রতি সুদৃঢ় দৃষ্টিভঙ্গিসুনিশ্চিত করার জন্য সমস্ত ভার্টিকেল রোগ কর্মসূচির অনুভূমিক সংহতি| ১২.নিশ্চিত লক্ষ্য অর্জনের জন্য বিশেষ ভাবে তৈরিবিভিন্ন রণনীতি ও হস্তক্ষেপ| ১৪.স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে আন্তঃক্ষেত্রীয় কেন্দ্রাভিমুককাজের জন্য সহজলভ্য মঞ্চের কার্যকর ব্যবহার| ১৫.সামনের সারির কর্মীদের উত্সাহ দেওয়ার জন্য ও তাদেরমধ্যে সহযোগিতার মনোভাবকে এগিয়ে নিয়ে যেতে দলভিত্তিক সহায়তা| ১৭.সমস্ত রাজ্যগুলোতে টিকাকরণ বিস্তারের প্রস্তাব| ১৮.আয়ুষ্মান ভারতের অধীনে প্রস্তাবিত জাতীয় স্বাস্থ্যসুরক্ষা মিশনের সঙ্গে একে সংহত করা হবে| এর ফলে যা হবে/সুবিধা হবে: অ) এন.এইচ.এম.-এর জন্যনির্ধারিত লক্ষ্যকে ধারাবাহিক সময়ের মধ্যে অর্জন করা| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বৃহস্পতিবার খনি ও খনিজ পদার্থ (উন্নয়ন ও নিয়মকানুন) আইন, ১৯৫৭ (এম.এম.ডি.আর. এই মউ মহাকাশ বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং রিমোট সেন্সিং অফ দ্য আর্থ,উপগ্রহ যোগাযোগ, উপগ্রহ নির্ভর ন্যাভিগেশন, মহাকাশ বিজ্ঞান ও গ্রহ অনুসন্ধান,মহাকাশযান ও স্পেস সিস্টেম ও গ্রাউন্ড সিস্টেমের ব্যবহার এবং মহাকাশ প্রযুক্তিরব্যবহার ইত্যাদি বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতায় সক্ষম করবে| এই মউ নতুন গবেষণা কার্যক্রম অন্বেষণ এবং রিমোট সেন্সিং অফ দ্যআর্থ, উপগ্রহ যোগাযোগ, উপগ্রহ নির্ভর ন্যাভিগেশন, মহাকাশ বিজ্ঞান ও মহাকাশঅনুসন্ধানের ক্ষেত্রে ব্যবহার সম্ভাবনায় বিশেষ অনুপ্রেরণা যোগাবে| সুসংহত প্রর্দশনী তথা সম্মেলন কেন্দ্র সংক্রান্ত এই প্রকল্পটি কেন্দ্রীয় মন্ত্রীসভার অর্থনৈতিক বিষয়ক কমিটি ২০১৭-র জানুয়ারি মাসে অনুমোদন করে। প্রগতি ময়দানের পার্শ্ববর্তী এলাকায় যানজট এড়ানোর ব্যবস্হাতেও এই প্রকল্প সাহায্য করবে। প্রকল্প নির্মাণ ও যানজট সমস্যার সমাধানের কাজ পুরোদমে চলেছে। ভারতীয় বাণিজ্য প্রসার সংগঠনের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, সমগ্র প্রকল্পের নির্মাণ কাজ ২০১৯-র সেপ্টেম্বর নাগাদ শেষ হয়ে যাবে। ৭১তম স্বাধীনতা দিবসে লালকেল্লার প্রাকার থেকে আজ প্রধানমন্ত্রী জাতিরউদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন । ভারতের স্বাধীনতার জন্য যেসব মহান নারী ও পুরুষ কঠোর পরিশ্রম করে গেছেন,প্রধানমন্ত্রী তাঁদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করেন। তিনি বলেন, ভারতের মানুষ কাঁধেকাঁধ মিলিয়ে প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত এবং গোরক্ষপুরের ঘটনায় মৃত শিশুদের পাশেরয়েছেন। তিনিবলেন, ২০২২ সালের মধ্যে নতুন ভারত গড়ে তোলার সঙ্কল্পে আমাদের একইরকম সমবেত শক্তিপ্রদর্শন করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী ‘চলতা হ্যায়’ – আত্মসন্তুষ্টির মানসিকতা পরিবর্তনের আহ্বানজানান এবং এর পরিবর্তে ‘বদল সাকতা হ্যায়’ বা সদর্থক পরিবর্তনের মানসিকতা গড়ে তোলারকথা বলেন। শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, ভারতের নিরাপত্তাই আমাদের অগ্রাধিকার এবংসার্জিক্যাল স্ট্রাইকের মধ্য দিয়ে তা সুস্পষ্ট হয়ে উঠেছে। তিনিজোরের সঙ্গে বলেন, কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াই চলবে এবং প্রযুক্তি সহায়তায় স্বচ্ছতাআনা সম্ভব হবে। তিনি সাধারণ মানুষকে আরও বেশি করে ডিজিটাল লেনদেনে উৎসাহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী অভিন্ন পণ্য ও পরিষেবা কর রূপায়ণকে সহযোগিতামূলকযুক্তরাষ্ট্রীয়তার এক উজ্জ্বল উদাহরণ হিসাবে বর্ণনা করেন। চলতি বছরে রেকর্ড খাদ্যশস্য উৎপাদনের জন্য প্রধানমন্ত্রী দেশের কৃষক ওকৃষি বিজ্ঞানীদের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন সরকার এ বছরে ১৬ লক্ষ টন ডালশস্য সংগ্রহকরেছে, যা গত বছরের তুলনায় অনেকটাই বেশি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রযুক্তির পরিবর্তনের ফলে কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রেভিন্ন ধরনের দক্ষতার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তিনি আরও বলেন, দেশের যুবকদের কর্মপ্রার্থীরজায়গায় কর্মসংস্থানকারী হিসেবে সহায়তা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের পূর্ব এবং পূর্বাঞ্চলের উন্নয়নের জন্য বিশেষমনোযোগ দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, সরকার উন্নয়নের নতুন এক পথে ভারতকে দ্রুতগতিতে এগিয়েনিয়ে যেতে চাইছে। শাস্ত্র থেকে উদ্বৃত করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আমরা যদি সঠিক সময়ে সঠিকপদক্ষেপ না নিই তাহলে প্রত্যাশিত ফললাভ সম্ভব হয় না। তিনি বলেন, টিম ইন্ডিয়াকে বাদলগতভাবে ভারতকে নতুন এক ভারত গড়ে তোলার সঙ্কল্প গ্রহণ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা চিনি নিয়ে বর্তমান কেন্দ্রীয়নির্দেশের মেয়াদ আরও ছয় মাসের জন্য (২৯.১০.২০১৬ থেকে ২৮.০৪.২০১৭ পর্যন্ত) বৃদ্ধিকরার অনুমোদন দিল| সম্পদ পুনরুদ্ধার সম্পর্কে ষষ্ঠ বিশ্ব মূল সম্মেলন এবং সি বি আই তথা রাজ্য দুর্নীতিদমন সংস্থাগুলির বার্ষিক সম্মেলনে উপস্থিত প্রতিনিধিবৃন্দের সামনে বক্তব্য রাখার সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। একইসঙ্গে এই সম্মেলনে যোগদানের জন্য বিদেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের জানাই স্বাগত সম্ভাষণ। আশা করি, আপনাদের এই ভারত সফর মনোরম ও স্মরণীয় হয়ে উঠবে। সি বি আই-এর যে সমস্ত আধিকারিক বিশেষ কাজের স্বীকৃতিস্বরূপ আজ এখানে পদকে সম্মানিত হয়েছেন, তাঁদের আমি অভিনন্দন জানাই। বিশ্বের সবক’টি দেশের সরকারই দরিদ্র এবং প্রান্তিক মানুষদের জীবনযাত্রার মান পরিবর্তনে সচেষ্ট রয়েছে। এই উদ্দেশ্য পূরণের পথে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হল দুর্নীতি। ভারতে আমরা বর্তমানে জাতি গঠনের এক গুরুত্বপূর্ণ সময়ের মধ্য দিয়ে যাচ্ছি। আমাদের লক্ষ্য ও সঙ্কল্প এক সমৃদ্ধ ভারত গড়ে তোলা। • দেশের কৃষকরা সুদক্ষ হয়ে উঠবেন; • আমাদের শ্রমিক ও কর্মীরা সন্তুষ্ট থাকবেন; • দেশের যুবসমাজ হয়ে উঠবে স্বনির্ভর। এই লক্ষ্য পূরণ কিন্তু কোনভাবেই অসম্ভব নয়। তবে, এই লক্ষ্য পূরণে প্রয়োজন দুর্নীতির বিরুদ্ধে নিরলস সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়া। দুর্নীতির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত তাই অঙ্গীকারবদ্ধ। দুর্নীতি এবং কালো টাকা উপার্জনের প্রবণতা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব বন্ধ করতে আমার সরকার গুরুত্বপূর্ণ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। যেদিন আমরা ক্ষমতায় আসীন হই, সেদিন থেকেই এই বিষয়টি দেখার জন্য শীর্ষ আদালতের তত্ত্বাবধানে আমরা এক বিশেষ তদন্ত দল গড়ে তুলি। কালো টাকা সম্পর্কে সঠিক সময়ে সঠিক তথ্য বিনিময়ের জন্য আমাদের সরকার বহু দেশের সঙ্গেই চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। বিদেশি অ্যাকাউন্ট খাতে বাধ্যতামূলকভাবে কর আদায়ের জন্য আইনের রূপায়ণে সরকার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে আন্তঃসরকারি পর্যায়ে এক চুক্তিও স্বাক্ষর করেছে। এই চুক্তির আওতায় ভারতীয়দের বিদেশে গচ্ছিত অর্থের অ্যাকাউন্ট সম্পর্কে ভারতের কর কর্তৃপক্ষ স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিতে যাবতীয় তথ্য সংগ্রহ করতে পারবে। বিদেশে সম্পদ ও কালো টাকা উপার্জনের ওপর কর আরোপ সম্পর্কিত একটি সুসংবদ্ধ ও যুক্তিযুক্ত আইন রূপায়ণের পথ প্রশস্ত করা হয়েছে। এর আওতায় অপরাধীদের কঠোর শাস্তিবিধান তথা তাদের অভিযুক্ত করারও সংস্থান রয়েছে। সম্পদ যাতে সঠিকভাবে সুরক্ষিত থাকে সেই লক্ষ্যে আমরা চালু করেছি অর্থের বেআইনি লেনদেন প্রতিরোধ সম্পর্কিত একটি আইন। এই ব্যবস্থায় বিভিন্ন পনজি প্রকল্পে লক্ষ লক্ষ দরিদ্র বিনিয়োগকারী তাদের কষ্টার্জিত অর্থের বেশ কিছুটা অংশ ফেরতের সুযোগ পেতে পাবেন। আমি আশা করি, হৃত সম্পদ পুনরুদ্ধারের উদ্যোগ সম্পর্কিত সংস্থা ‘স্টার’ এবং ইন্টারপোলের মধ্যে সহযোগিতার ফলশ্রুতিতে চুরি যাওয়া সম্পদের হদিশ এবং তা ফিরে পাওয়ার সম্ভাবনা উজ্জ্বল হয়ে উঠবে। এর ফলে, সমগ্র ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা বজায় রয়েছে এবং নাগরিকদের মনে সরকার সম্পর্কে আস্থার ভাবও ফিরে এসেছে। শুধু তাই নয়, এর ফলে বেশ কিছু রাজস্বও এসে পৌঁছেছে সরকারের ঘরে যা সাধারণ মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা হবে। পদ্ধতি মোতাবেক এবং নীতি পরিচালিত শাসন ব্যবস্থা গড়ে তোলার দিকে আমরা নজর দিয়েছি। আমরা গড়ে তুলতে চাই এমন এক শাসন ব্যবস্থার কাঠামো যা হয়ে উঠবে স্বচ্ছ, সংবেদনশীল এবং দায়বদ্ধ। সরল প্রযুক্তি এবং নীতিভিত্তিক উদ্যোগ গ্রহণের মাধ্যমে দক্ষতার সঙ্গে অথচ নিঃশব্দে দুর্নীতি কিভাবে দূর করা যেতে পারে তার একটি দৃষ্টান্ত আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। আমরা যখন ক্ষমতায় এসেছিলাম, তখন আমাকে বলা হয় যে রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের ক্ষেত্রে ভর্তুকিবাবদ সিলিন্ডারপ্রতি প্রায় ৪০০ টাকার মতো ব্যয় হয়। এই ভর্তুকির সুযোগ ধনী ও দরিদ্র উভয়ই ভোগ করেন। তখন আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করি গ্যাস সংযোগের গ্রহীতাদের আধার-ভিত্তিক ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে ভর্তুকির অর্থ সরাসরি জমা করার। এই একটিমাত্র পদক্ষেপেই ভর্তুকি দাবির ঘটনা কমে এসেছে প্রায় ৫ কোটির মতো। পরবর্তীকালে, সম্পন্ন গৃহস্থ পরিবারগুলির জন্য রান্নার গ্যাসের ওপর স্বেচ্ছায় ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়ার এক অভিযান শুরু করি। আমদের এই আহ্বানে যে সাড়া আমরা পেয়েছি তা খুবই উৎসাহজনক। এখনও পর্যন্ত ৪৫ লক্ষ মানুষ রান্নার গ্যাসের ওপর স্বেচ্ছায় ভর্তুকি ছেড়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছেন। যে চ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলা আমাদের এখন করতে হবে তার অন্যতম হল সরকারি খাতে ঘাটতির পরিমাণ হ্রাস করা। এর মধ্যে রয়েছে – • সুদক্ষ ও কার্যকর সরকারি পরিষেবা প্রসারের ক্ষেত্রে ক্ষমতার অপ্রতুলতা আমলাতান্ত্রিক ব্যবস্থাকে দক্ষ, কর্মমুখী এবং দায়বদ্ধ করে তোলার লক্ষ্যে আমার সরকার বেশি কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। সরকারি কর্মীদের সংহতি ও সততা নিশ্চিত করতে এবং মিথ্যা ও অযৌক্তিক অভিযোগের হাত থেকে তাদের রক্ষা করতে আমার সরকার প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। সেইসঙ্গে, দুর্নীতিবাজদের শাস্তি দেওয়ার ব্যাপারে সরকার পুরোপুরি আপোষহীন। কাজকর্ম সন্তোষজনক না হওয়ায় এবং সরকারি পরিষেবাদানের ক্ষেত্রে ব্যর্থতার জন্য বিভিন্ন সরকারি সেবার ৪৫ জন পদস্থ আধিকারিককে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে এবং তাদের পেনশনও কেটে নেওয়া হয়েছে। সংগঠিত অপরাধের ঘটনা বিশ্বব্যাপী ছড়িয়ে পড়ছে যা সবক’টি দেশের অর্থনীতির বিরুদ্ধে এক বড় ধরনের হুমকি বিশেষ। এ কথা সুবিদিত যে অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থ সৎভাবে অর্থ উপার্জনকে প্রভাবিত করেছে। সংগঠিত অপরাধ বিনিয়োগ ও অর্থনৈতিক অগ্রগতির পরিপন্থী। দেশের অর্থনীতিতে তা শুধু অন্যায়ভাবে ভাগই বসায় না, অর্থনীতির এক বিরাট অংশকে নিয়ন্ত্রণ করারও চেষ্টা করে। অবৈধভাবে অর্থ সংগ্রহ মাদকচালান, অস্ত্রশস্ত্রের বেআইনি লেনদেন, মানুষ পাচার এবং সন্ত্রাসবাদের মতো সংগঠিত অপরাধকে আরও বাড়িয়ে তোলে। মাত্র কয়েকদিন আগে প্যারিসে যে ভয়ঙ্কর ঘটনা ঘটে গেল তা আমাদের মনে করিয়ে দেয় যে অর্থ সংগ্রহের প্রয়োজনে সন্ত্রাসবাদীরা যেনতেনপ্রকারেণ তাদের কার্যসিদ্ধি করতে তৎপর। অর্থ সংগ্রহের সমস্তরকম রাস্তা বন্ধ করে দিলে সন্ত্রাসবাদীদের ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়ে এবং আক্রমণের ঘটনা থেকেও তাদের নিরস্ত রাখা যায়। এজন্য প্রয়োজন ব্যবস্থাগত রক্ষাকবচ এবং সন্ত্রাসবাদ বিরোধী গোপন তথ্য সংগ্রহের মাধ্যমে অর্থ মঞ্জুরির বিষয়টিকে সঠিক পথে চালিত করা। অপরাধের ঘটনা কোনদিকে যাচ্ছে তার গতিপ্রকৃতির দিকে লক্ষ্য রাখলে অপরাধ দমন সহজ হয়ে ওঠে। এই কারণেই সম্পদ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে এবং দুর্নীতি ও সন্ত্রাসমূলক কাজকর্মের মতো অপরাধমূলক ঘটনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতার প্রয়োজন সবথেকে বেশি। দুর্নীতিপ্রবণ সরকারি কর্মীদের শাস্তি হিসেবে তাদের অসৎ উপায়ে অর্জিত অর্থ ও সম্পদ আটক করার পরামর্শ কৌটিল্য তাঁর অর্থশাস্ত্রেও দিয়ে গেছেন। রাজ্য দুর্নীতিদমন ব্যুরো এবং সি বি আই দুর্নীতির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ সম্পর্কে এই সম্মেলনে মত বিনিময় করবে জেনে আমি খুশি। দু’দশকের প্রাচীন এই ফোরাম দুর্নীতির সঙ্গে যুক্ত অপরাধীদের শুধুমাত্র অভিযুক্তই করবে না, সেইসঙ্গে এই সংস্থাগুলি তাদের কর্মপদ্ধতিও সংশোধন করবে যাতে দুর্নীতির দক্ষ মোকাবিলা সম্ভব হয়ে ওঠে। তদন্তকারী সংস্থাগুলির কাজকর্ম জাতীয় সীমানার মধ্যেই সীমাবদ্ধ। তাই, পারস্পরিক আদানপ্রদানের ভিত্তিতে আমাদের সরকার তথ্য বিনিময়ের স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থার ক্ষেত্রে বিশ্বে এক অভিন্ন মান বজায় রাখতে আগ্রহী। এর ফলে, যদি কেউ গোপন অর্থ জমা রাখেন সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ খুব সহজেই সম্ভব হয়ে ওঠে। সম্পদ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে ইন্টারপোল উত্তরোত্তর সক্রিয় ভূমিকায় অবতীর্ণ হচ্ছে। ২০০৯ সাল থেকে ‘গ্লোবাল ফোকাল পয়েন্ট ফোরাম’ সারা বিশ্বের আইন বলবৎকারী সংস্থা এবং দুর্নীতি দমন এজেন্সিগুলির মধ্যে দুর্নীতি সংক্রান্ত তথ্য বিনিময় কার্যকরভাবে রূপায়িত করছে। জটিল ক্ষেত্রগুলিতে সম্পদ পুনরুদ্ধারের লক্ষ্যে তদন্ত ও অভিযানের ক্ষেত্রে ইন্টারপোলের নতুন বিজ্ঞপ্তিতে আরও কিছু নতুন ব্যবস্থার উল্লেখ থাকতে পারে। ইন্টারপোল এবং তার সহযোগী বিশ্বব্যাঙ্ক ও ‘ইউনোডিসি’র প্রচেষ্টাকে আমি সাধুবাদ জানাই। ইন্টারপোল এবং ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির মধ্যে যে ভালোরকম বোঝাপড়ার সৃষ্টি হয়েছে তার ফলে বেশ কিছু পলাতক অপরাধীর খোঁজখবর মিলেছে বলে আমি জানতে পেরেছি। এই ধরনের সহযোগিতা আরও জোরদার হয়ে উঠুক এটাই আমাদের কাম্য। অনুসন্ধানমূলক তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে যে সমস্ত বাধা-বিপত্তি পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে তা দূর করতে সি বি আই ভারতের আইন বলবৎকারী সংস্থা এবং বিদেশের এই ধরনের সংস্থাগুলিকে সক্রিয়ভাবে সহযোগিতা করে আসছে। বিশ্বের সমস্ত দেশের আইন বলবৎকারী সংস্থাগুলির মধ্যে আরও বেশি করে সহযোগিতার প্রসারে সি বি আই ইন্টারপোলের পদ্ধতি ও ব্যবস্থা গ্রহণ করছে এ খবরও আমার কাছে এসেছে। শুধু তাই নয়, ইন্টারপোল দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য যে সমস্ত কর্মসূচি গ্রহণ করেছে সি বি আই তাতেও নানাভাবে সহযোগিতা করছে বলে জানা গেছে। তদন্ত অনুসন্ধানের কাজে গাজিয়াবাদে এক আন্তর্জাতিক উৎকর্ষ কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ আমরা করছি। সাইবার অপরাধ সহ অপরাধের নতুন নতুন ক্ষেত্রগুলিতে তদন্ত, অনুসন্ধান এবং অভিযোগ দায়ের করার ক্ষেত্রে করণীয় বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে শিক্ষাদানের জন্য এই কেন্দ্রটিতে কোর্স চালু করা হবে। সাইবার অপরাধের মতো এ যুগের নতুন নতুন অপরাধের মোকাবিলায় কেন্দ্রীয়ভাবে এক প্রযুক্তিগত ব্যবস্থা গড়ে তোলারও পরিকল্পনা আমাদের রয়েছে। ভারতের বিচারব্যবস্থার ইতিহাসে এমন অনেক ঘটনার নজির রয়েছে যেখানে ফরেন্সিক বিশেষজ্ঞের মতামতকে ভিত্তি করে অপরাধ চিহ্নিত হয়েছে। এই কারণে ফরেন্সিক মতামতের ক্ষেত্রে যে বিপুল কাজ এখনও বাকি রয়ে গেছে তা সম্পূর্ণ করতে ভারতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা ও কাঠামো গড়ে তুলতে হবে। দুর্নীতি ও অপরাধের মূলে রয়েছে হৃত সম্পদ। যেখানে সেগুলি জমা করা হয় তা মূলত দেশের সীমানার বাইরে। অথচ, যে দেশ থেকে সেগুলি চুরি করা হয় সম্পদের ন্যয়সঙ্গত অধিকার সংশ্লিষ্ট ঐ দেশের নাগরিকদের। সম্পদ পুনরুদ্ধারের ক্ষেত্রে কিছু কিছু আইনগত ও পদ্ধতিগত বাধা-বিপত্তি রয়েছে একথা আমরা জানি। এই ধরনের চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় পুলিশ এবং আইন বলবৎকারী সংস্থাগুলির মধ্যে সম্পর্ক আরও গভীর করে তোলা দরকার। আমি আশা করব এই সম্মেলনে এই ধরনের এক সুযোগ আপনারা লাভ করবেন। আমি আরও আশা করি যে সমবেত প্রতিনিধিরা খুব চিন্তাভাবনার সঙ্গে তাঁদের মতামত তুলে ধরবেন এবং উপযুক্ত প্রয়োগ-পদ্ধতি ও নিয়মকানুন উদ্ভাবন করবেন যাতে চুরি যাওয়া সম্পদের সন্ধান পাওয়া যায়, সেগুলিকে চিহ্নিত করা যায় এবং তা আটক করে দেশে ফিরিয়ে আনা যায়। উভয় নেতাই বিশ্বাস করেন যে, দুই বৃহৎ অর্থনীতি হিসাবে এবং কৌশল ও সিদ্ধান্তগত সুশাসন সহ, ভারত ও চীনের যুগপৎ উত্থানের আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক তাৎপর্য রয়েছে। ভারত ও চীনের মধ্যে শান্তিপূর্ণ, স্থিতিশীল ও সমতা-ভিত্তিক সম্পর্ক, বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার মধ্যে স্থিতিশীলতার জন্য সদর্থক ভূমিকা নেবে বলে তাঁরা সহমত পোষণ করেন। তাঁরা এ বিষয়েও একমত হন যে, দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক যথাযথভাবে পরিচালিত হলে তা এই অঞ্চলের বিকাশ ও সমৃদ্ধির জন্য অনুকূল পরিবেশ সৃষ্টি করবে এবং এশীয় শতকের জন্য উপযুক্ত পরিস্থিতি তৈরি করবে বলেও তাঁরা মনে করেন। এই লক্ষ্যে তাঁরা জাতীয় পর্যায়ের আধুনিকীকরণ ও দু-দেশের মানুষের জন্য অধিকতর সমৃদ্ধির পথে এগোতে পারস্পরিক আস্থার ভিত্তিতে, উন্নয়নের অংশীদারিত্বকে আরও শক্তিশালী করার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি শি, কৌশলগত ও দীর্ঘমেয়াদী পরিপ্রেক্ষিতে ভারত-চীন সম্পর্কের পরিস্থিতি পর্যালোচনা করেন। তাঁরা ভবিষ্যৎ সম্পর্কের জন্য ব্যাপকতম এক সম্ভাব্য মঞ্চ সৃষ্টি করার লক্ষ্যে প্রতিষ্ঠিত ব্যবস্থার মাধ্যমে ঐক্যের ভিত গড়ে তুলতে দু-দেশের উদ্যোগকে উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি করার বিষয়ে রাজি হয়েছেন। একে অপরের স্পর্শকাতরতা, নিজস্ব ধ্যানধারণা এবং আশা-আকাঙ্খাকে মর্যাদা প্রদানের গুরুত্বের কথা মাথায় রেখে দু-দেশের মধ্যেকার সামগ্রিক সম্পর্কের প্রেক্ষাপটে শান্তিপূর্ণ আলোচনার মাধ্যমে, মতপার্থক্য মোকাবিলার মতো পরিপক্কতা ও বিচক্ষণতা উভয় দেশেরই আছে বলে তাঁরা একমত হন। দুই নেতাই ভারত-চীন সীমান্ত প্রশ্নে, বিশেষ প্রতিনিধিদের কাজের প্রতি সমর্থন ব্যক্ত করেন এবং একটি ন্যায্য, যুক্তিগ্রাহ্য ও উভয় দেশের কাছে গ্রহণযোগ্য সমাধান খুঁজে বের করতে, তাঁদের উদ্যোগ জোরদার করার আহ্বান জানান। উভয় নেতাই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের সামগ্রিক উন্নয়নের বৃহত্তর স্বার্থে, ভারত-চীন সীমান্ত অঞ্চলের সমগ্র এলাকায় শান্তি ও স্থিতিশীলতা বজায় রাখার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। উভয় নেতা, সীমান্ত অঞ্চলে যে কোনও ঘটনা প্রতিরোধে প্রচলিত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা ও তথ্য বিনিময় ব্যবস্থা শক্তিশালী করা এবং পারস্পরিক ও সমতা-ভিত্তিক নিরাপত্তা সহ দু-দেশের মধ্যেকার সমঝোতা অনুসারে বিভিন্ন ধরণের আস্থাবর্ধক পদক্ষেপ যথাযথভাবে রূপায়ণ করার জন্য উভয় দেশের সামরিক বাহিনীকে নির্দেশ দেন। দুই নেতাই দুই অর্থনীতির মধ্যে সহমত-ভিত্তিক বিষয়গুলির সুবিধাকে কাজে লাগিয়ে সুষম ও সমতার ভিত্তিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্য ও বিনিয়োগকে এগিয়ে নিতে যেতে রাজি হন। তাঁরা দু-দেশের মধ্যে সাংস্কৃতিক ও মানুষে-মানুষে আরো বেশি করে বিনিময়কে উৎসাহিত করতে পন্থা-পদ্ধতি নিয়ে আলোচনা হয় এবং এই লক্ষ্যে নতুন ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য পথ খোঁজার বিষয়েও একমত হন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি শি, উভয়েই মনে করেন, দুই প্রধান দেশ হিসাবে ভারত ও চীনের ব্যাপক এবং সমবিষয়ে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক স্বার্থ রয়েছে। তাঁরা অভিন্ন স্বার্থ সংশ্লিষ্ট সব বিষয়ে, আরও বেশি আলাপ-আলোচনার মাধ্যমে কৌশলগত যোগাযোগ শক্তিশালী করার প্রয়োজনের বিষয়ে একমত হন। তাঁরা মনে করেন, এই ধরণের কৌশলগত যোগাযোগ, পারস্পরিক বোঝাপড়া বৃদ্ধির ক্ষেত্রে সদর্থক প্রভাব ফেলবে এবং আঞ্চলিক ও বিশ্বের স্থিতিশীলতার ক্ষেত্রেও কার্যকর অবদান রাখবে। এক মুক্ত, বহুমেরু বহুত্ববাদী এবং সকলের অংশগ্রহণমূলক বিশ্ব অর্থনৈতিক ব্যবস্থা যে সমস্ত দেশের উন্নয়নকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া এবং বিশ্বের সমস্ত অঞ্চল থেকে দারিদ্র্য ও অসাম্য দূর করার ওপর তাঁরা পুনরায় বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেন। তাঁরা আঞ্চলিক ও বিশ্ব অর্থনৈতিক বিকাশের ক্ষেত্রে নিজ নিজ উদ্যোগের কথা বলেন। দুই নেতাই বিশ্বের সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তার লক্ষ অর্জনে নিজ নিজ দেশের বিদেশ নীতির দৃষ্টিভঙ্গীর বিষয়ে মতবিনিময় করেন। তাঁরা জলবায়ু পরিবর্তন, সুষম বিকাশ, খাদ্য নিরাপত্তার মতো বিশ্বের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় সদর্থক ও গঠনমূলকভাবে যৌথ অবদান রাখার বিষয়ে একমত হন। তাঁরা উন্নয়নশীল দেশগুলির চাহিদার কথা মাথায় রেখে বিশ্বের বহুপাক্ষিক রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক সংস্থাগুলির সংস্কারের মাধ্যমে সেগুলিকে প্রতিনিধিত্বমূলক করে তোলার গুরুত্বের ওপর জোর দেন। উভয় নেতাই একুশ শতকের মানবসভ্যতার সামনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় উদ্ভাবনী এবং সুষম সমাধানের জন্য নেতৃত্ব দিতে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করার বিষয়েও একমত হন। কারণ, ভারত ও চীনের দুটি প্রধান দেশ ও উদীয়মান অর্থনীতি হিসাবে উন্নয়নমূলক কাজ ও জাতীয় সক্ষমতার বিশাল ঐতিহ্য রয়েছে। বিশ্বের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জের মধ্যে তাঁরা মানবতার ব্যাপকতর স্বার্থে এই সব ক্ষেত্রে কাজের জন্য উভয় দেশের অভিজ্ঞতা ও জ্ঞান এবং সহায়সম্পদকে একত্রিতভাবে ব্যবহার করা এবং এইসব চ্যালেঞ্জ মোকাবিলার জন্য একটি বিশ্বব্যাপী নেটওয়ার্ক সৃষ্টি করার উদ্যোগ বিষয়েও একমত হন। প্রধানমন্ত্রী মোদী ও রাষ্ট্রপতি শি সন্ত্রাসবাদকে সবার কাছে এক বিপদ হিসাবে স্বীকৃতি দিয়ে সমস্ত ধরণের সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় ও তার নিন্দায় এবং দৃঢ়ভাবে বিরোধিতার বিষয়ে তাঁদের অবস্থান পুনরায় স্পষ্ট করেন। তাঁরা সন্ত্রাসবাদের বিরোধিতায় সহযোগিতার বিষয়ে প্রত্যয় ব্যক্ত করেন। উহানে এবারের এই শীর্ষ বৈঠকে, দুই নেতার মধ্যে যেভাবে মতবিনিময়ের সুযোগ সৃষ্টি হয়, দুই নেতাই তার সঠিক মূল্যায়ন করেন। এই বৈঠক ভবিষ্যতে দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রের উন্নয়নেও সহায়ক হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার উত্তরাখন্ডের হরসিলে ভারতীয় সেনাবাহিনী ও ভারত-তীব্বত সীমান্ত পুলিশ বাহিনী জওয়ানদের সঙ্গে দীপাবলী উদযাপন করেন। এই উপলক্ষে জওয়ানদের শুভেচ্ছা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যন্ত তুষারাচ্ছন্ন পার্বত্য এলাকায় কর্তব্যের প্রতি তাঁদের আন্তরিকতা সমগ্র দেশের শক্তি বাড়াচ্ছে এবং ১২৫ কোটি ভারতবাসীর ভবিষ্যৎ স্বপ্নকে সুনিশ্চিত করছে। তিনি বলেন, আলোর উৎসব দীপাবলী ভয় দূর করে মানবিক গুণাবলীর আলো ছড়িয়ে দেয়। একইভাবে, জওয়ানরাও তাঁদের দায়বদ্ধতা ও সুশৃঙ্খল জীবনযাপনের মধ্য দিয়ে মানুষের মনে নিরাপত্তা ও ভয়ভীতিহীন মানসিকতা ছড়িয়ে দিতে কাজ করে চলেছেন বলে তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালীন সময় থেকেই তিনি দীপাবলীতে সেনা জওয়ানদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আসছেন। বেশ কয়েক বছর আগে কৈলাশ মানস সরোবর যাত্রায় যুক্ত থাকার কথা স্মরণ করে ভারত – তীব্বত সীমান্ত পুলিশের জওয়ানদের সঙ্গে তাঁর মতবিনিময়ের কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, রাষ্ট্রসংঘের শান্তি রক্ষা অভিযানগুলিতে ভারতীয় সেনাবাহিনীর ভূমিকা সারা বিশ্ব জুড়ে প্রশংসিত ও সমাদৃত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী জওয়ানদের মধ্যে মিষ্টি বিতরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে বিনিয়োগ বৃদ্ধি ও সুরক্ষা চুক্তির যৌথ বিবৃতি (জে আই এন) সম্পর্কে অনুমোদন দিয়েছে। ভারত ওবাংলাদেশের মধ্যে লগ্নি বৃদ্ধি ও সুরক্ষা সম্পর্কে বিদ্যমান চুক্তিটির ব্যাখ্যায়স্পষ্টতা আনার জন্য এই জেআইএন-এর প্রয়োজন। বিনিয়োগকারী ও বিনিয়োগের সংজ্ঞা, করপদ্ধতির ছাড় সবচেয়ে কাঙ্খিত দেশ সংক্রান্ত আচরণ প্রভৃতি নানা বিষয় এবং বিনিয়োগকারীও চুক্তিকারী কর্তৃপক্ষের মধ্যে বিবাদ মীমাংসা প্রভৃতি বিষয়ে এই জেআইএন-এরস্পষ্টীকরণ আছে। বিনিয়োগচুক্তি ব্যবস্থাকে জোরদার করতে যৌথ ব্যাখ্যামূলক বিবৃতিগুলি সাধারণত গুরুত্বপূর্ণপরিপূরক ভূমিকা পালন করে। বিনিয়োগ সংক্রান্ত দ্বিপাক্ষি চুক্তি বিষয়ক বিভাগ ক্রমশবাড়তে থাকায় এই ধরণের বিবৃতি জারি অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার শিক্ষক শিক্ষণের জাতীয় পরিষদ আইন,১৯৯৩-কে সংশোধন করার জন্য ‘ শিক্ষকশিক্ষণের জাতীয় পরিষদ (সংশোধিত) আইন, ২০১৭ ’ নামে একটি বিল সংসদে উত্থাপনের জন্য অনুমোদন দিল| এন.সি.টি.ই.-এর পক্ষ থেকেসমস্ত কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয়, রাজ্য বিশ্ববিদ্যালয় এবং শিক্ষা ও প্রশিক্ষণেরজেলা প্রতিষ্ঠানগুলিকে (ডায়েট) এই কোর্সের জন্য অনুমোদনের প্রয়োজনীয়তা নিয়ে জানানোহয়েছে| পাশাপাশি যারা ইতোমধ্যেই কোনো অনুমতি ছাড়া তা শুরু করেছে, তাদেরকে ৩১ মার্চ২০১৭ তারিখের মধ্যে অনুমতি চাওয়ার জন্য বলা হয়েছে, যাতে তাদেরকে চলতে থাকা বা আগেরকোর্সের ক্ষেত্রে একবারের জন্য এই অনুমতি দেওয়া যায়| জলসম্পদেরব্যবস্থাপনা ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় জলসম্পদ,নদী বিকাশ ও গঙ্গার পুনরুজ্জীবন মন্ত্রক এবং নেদারল্যান্ডসের পরিকাঠামো ও পরিবেশ মন্ত্রকেরমধ্যে একটি মউ সম্পাদনের প্রস্তাবে বৃহস্পতিবার অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা।প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে এদিন অনুষ্ঠিত হয় মন্ত্রিসভার বৈঠক। দ্বিপাক্ষিকসহযোগিতা প্রসার সম্পর্কিত এই মউ-এর আওতায় সমীক্ষা সফরের মাধ্যমে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাবিনিময়, আলোচনা বৈঠক ও সম্মেলনের আয়োজন, যৌথ উদ্যোগে গবেষণা এবং প্রশিক্ষণ ওদক্ষতা বৃদ্ধির কর্মসূচি, প্রশিক্ষণ সম্পর্কিত বিনিময় সফর এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্যপ্রচেষ্টার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করা হবে। কেন্দ্রীয় সড়কপরিবহণ ও মহাসড়ক মন্ত্রকের সেন্ট্রাল ইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস (সি ই এস) (রোড্‌স)-এরক্যাডার পর্যালোচনার বিষয়টি সোমবার অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরনেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। এ সম্পর্কিত প্রস্তাবটিঅনতিবিলম্বেই কার্যকর হতে চলেছে। সেন্ট্রালইঞ্জিনিয়ারিং সার্ভিস (রোড্‌স)-এর ক্যাডার পর্যালোচনার ফলে যে সংশোধনগুলি কার্যকরহবে তার মধ্যে রয়েছে : প্রসঙ্গত উল্লেখ্য,সি ই এস (রোড্‌স) ক্যাডারটি গঠন করা হয় ১৯৫৯ সালে। পরে, ১৯৭৬ সালে গ্রুপ ‘এ’পর্যায়ের টেকনিক্যাল পদ নির্দিষ্ট করা হয় ১৮৯টি। এর আগে সর্বশেষ ক্যাডারপর্যালোচনা করা হয়েছিল ১৯৮৭ সালে। এই ক্যাডারপর্যালোচনার জন্য বছরে অতিরিক্ত ব্যয়ের মাত্রা ১ কোটি ৮০ লক্ষ টাকার মতো। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বিশিষ্ট হিন্দুস্হানী শাস্ত্রীয় সঙ্গীত শিল্পী উস্তাদ হুসেন সায়িউদ্দিন ডাগরের প্রয়াণে শোকজ্ঞাপন করেছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “ উস্তাদ হুসেন সায়িউদ্দিন ডাগরের মৃত্যু অত্যন্ত শোকাবহ। হিন্দুস্হানীশাস্ত্রীয় সঙ্গীতে তাঁর অবদান যুগ যুগ ধরে স্মরণীয় হয়ে থাকবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ৩রা অক্টোবরে নতুন দিল্লির প্রবাসী ভারতীয় কেন্দ্রে এক বিশেষ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রসংঘের পরিবেশ ক্ষেত্রের সর্বোচ্চ সম্মান ইউএনপি চ্যাম্পিয়ন অফ দ্য আর্থ’ পুরস্কারে ভূষিত হবেন। এই প্রকল্পের সূচনার সঙ্গে সঙ্গেই সুফলভোগী কৃষকদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে প্রথম কিস্তির ২,০০০ টাকা সরাসরি পৌঁছে যাবে। প্রকল্পের সূচনার জন্য শ্রী মোদী কৃষকদের অভিনন্দন জানান। তিনি ডেয়ারি শিল্প ও মৎস্যচাষের সঙ্গে যুক্ত পরিবারগুলিকেও অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এখন থেকে এঁরাও কিষাণ ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা পাবেন। সমাবেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ইতিহাসে এই দিনটি স্মরণীয় হয়ে উঠতে চলেছে কারণ, স্বাধীনতার পর আজ প্রথমবার কৃষক সমাজের কল্যাণে সর্ববৃহৎ প্রকল্পের সূচনা হল। ‘পিএম-কিষাণ’ প্রকল্পের আওতায় প্রায় ১২ কোটি কৃষক লাভবান হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। শ্রী মোদী বলেন, এই প্রকল্পের মাধ্যমে প্রতি বছর কৃষকদের অ্যাকাউন্টে ৭৫,০০০ কোটি টাকা স্থানান্তরিত করা হবে প্রত্যেক বছর। কৃষক শ্রেণীর কল্যাণে ১৭ কোটি মৃত্তিকা স্বাস্থ্য কার্ড, নিমের আস্তরণযুক্ত ইউরিয়া, উৎপাদন খরচের ৫০ শতাংশ বা তার বেশি হারে ২২টি ভিন্ন ধরণের ফসলের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য ঘোষণা, প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা এবং ই-ন্যাম বা বৈদ্যুতিন জাতীয় কৃষি বাজার ব্যবস্থা চালু করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র পূর্ব উত্তরপ্রদেশ এখন দ্রুত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে এগিয়ে চলেছে। এই পরিবর্তনের মধ্যে শিল্প, যোগাযোগ ব্যবস্থা ও স্বাস্থ্যক্ষেত্রের সার্বিক উন্নয়নের বিষয়গুলি স্পষ্ট প্রতিফলিত হচ্ছে। কেন্দ্রীয়সরকারের বিভিন্ন মন্ত্রকের শীর্ষ কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সোমবার এক বৈঠকে মিলিতহলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। পূর্ববর্তীশতকগুলির প্রশাসনিক গতানুগতিকতা ছেড়ে বিশ্বের এক-ষষ্ঠাংশ অধিবাসীর জীবনযাত্রায়পরিবর্তন তথা রূপান্তর সম্ভব করে তোলার সুযোগ গ্রহণ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীউদ্বুদ্ধ করেন কেন্দ্রীয় সচিবদের। দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা বার্ষিকী, অর্থাৎ, আগামী২০২২ সালের মধ্যে যে নির্দিষ্ট লক্ষ্যগুলি পূরণ করা প্রয়োজন তা চিহ্নিত করতেও তিনিতাঁদের পরামর্শ দেন। দেশেরসার্বিক উন্নয়নে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রকের বাঁধাধরা কাজের বাইরে গিয়েও আরও বেশি কিছুকরার জন্য সচিবদের আহ্বান জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রী মোদীবলেন, আগামী ১ জুলাই থেকে দেশে চালু হতে চলেছে পণ্য ও পরিষেবা কর, যা দেশেরইতিহাসে এক যুগান্তকারী ঘটনা। এই পরিবর্তন তথা রূপান্তর সম্ভব করে তুলতে এবংরূপায়ণের কাজকে সুষ্ঠুভাবে চালিয়ে নিয়ে যেতে সক্রিয়ভাবে কাজ করে যাওয়ার তিনিপরামর্শ দেন কেন্দ্রীয় সচিবদের। বিশ্বের প্রত্যাশা পূরণের কাজেপ্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গড়ে তোলার জন্য তিনি পরামর্শ দেন সচিবদের। দেশেরঅনগ্রসর ১০০টি জেলার উন্নয়নে বিশেষ উৎসাহ ও আগ্রহের সঙ্গে কাজ করার জন্য কেন্দ্রীয়সরকারি সচিবদের আহ্বান জানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বলেন, এই জেলাগুলির জন্যখুব স্বল্পকালের মধ্যেই নির্দিষ্ট লক্ষ্যপূরণের কাজগুলি সেরে ফেলা প্রয়োজন । নিতি আয়োগ আয়োজিতএই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হবে রাজধানীর আম্বেদকর আন্তর্জাতিক কেন্দ্রে। ১০০-টিরও বেশিজেলার রূপান্তর প্রকল্পের দায়িত্বপ্রাপ্ত আধিকারিকদের সঙ্গে সেখানে আলোচনা ওমতবিনিময়ও করবেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী ২০২২সালের মধ্যে এক ‘নতুন ভারত’ গড়ে তোলার যে উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন প্রধানমন্ত্রী, তারসঙ্গে সঙ্গতি রেখেই এই সম্মেলনের আয়োজন। উন্নয়নের মাপকাঠির দিক থেকে যে সমস্ত জেলাএখনও পিছিয়ে রয়েছে, সেগুলির দ্রুত বিকাশ তথা রূপান্তর কেন্দ্রীয় সরকারের প্রধানপ্রধান নীতিগুলির একটি অন্যতম বিষয়। সতর্কতা ওসচেতনতা সপ্তাহ ২০১৬ উদযাপনের সমাপ্তি অনুষ্ঠান উপলক্ষে সোমবার নয়াদিল্লির বিজ্ঞানভবনে উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনিবলেন, স্বচ্ছতা রক্ষা এবং দুর্নীতি দমনে প্রযুক্তি এক বড় ধরণের ভূমিকা পালন করতেপারে। প্রধানমন্ত্রীতাঁর বক্তব্যে আরও বলেন যে, রাষ্ট্র-পরিচালনার মূলে রয়েছে নীতি নির্ধারণেরবিষয়গুলি। ব্যক্তি বিশেষের খেয়াল-খুশি মতো কোনও কিছুই চলতে পারে না। শ্রী মোদীবলেন, আইন প্রণয়ন এবং নীতি নির্ধারণের সময় সমস্ত বিষয় সম্পর্কে ওয়াকিবহাল থাকাএকান্ত জরুরি । প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি নয়াদিল্লিতে আগামীকাল সকালে “সাম্প্রতিক বিশ্বজনীন ঘটনাসমূহ: ভারতের জন্য সুযোগ” শীর্ষক এক উচ্চ পর্যায়ের পরামর্শমূলক বৈঠকে পৌরোহিত্য করবেন| এই বৈঠকে ৪০ জনেরও বেশি প্রতিনিধি অংশগ্রহণ করবেন| তাঁদের মধ্যে থাকবেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার পূর্ণ মন্ত্রীরা, সরকার ও রিজার্ভ ব্যাঙ্ক অফ ইন্ডিয়া-র শীর্ষ স্থানীয় আধিকারিকরা, শিল্প সংস্থাসমূহের প্রতিনিধিরা, শীর্ষ স্থানীয় ব্যাঙ্কগুলোর কর্মকর্তাগণ, বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদগণ এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রের বিশেষজ্ঞরা| সাম্প্রতিক অর্থনৈতিক ঘটনাবলির প্রভাব সহ ওই প্রেক্ষাপটে ভারত কিভাবে এগুলোর সদ্ব্যবহার করতে পারে সেসম্পর্কে বিস্তারিত প্রেক্ষিতে আলোচনা হবে বলে আশা করা হচ্ছে| “স্বচ্ছাগ্রহ– বাপু কো কার্যাঞ্জলি – এক অভিযান, এক প্রদর্শনী” শীর্ষক এক বিশেষ প্রদর্শনীরসোমবার এখানে উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। চম্পারনে মহাত্মাগান্ধীর প্রথম সত্যাগ্রহ আন্দোলনের শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে এই প্রদর্শনীর আয়োজন। এইউপলক্ষে জাতীয় পুরাতাত্ত্বিক বিভাগ আয়োজিত এক অনলাইন ক্যুইজ প্রতিযোগিতারও তিনিএদিন সূচনা করবেন। ডিজিটাল পদ্ধতিতে আবেদন ও মামলা দাখিলকরার সুবিধাগুলি ব্যাখা করে ভারতের প্রধান বিচারপতি এই উদ্যোগকে বিচার ব্যবস্হায়প্রযুক্তি প্রবর্তনের এক বৃহৎ পদক্ষেপ হিসাবে বর্ণনা করেন। প্রযুক্তি ভিত্তিক এই ব্যবস্হা প্রসঙ্গে তাঁর বক্তব্যে বিচারপতিখানউইলকার বলেন, নতুন এই উদ্যোগ “ সবকা সাথ, সবকা বিকাশ ” -এর এক উদাহরণ। কেন্দ্রীয় আইন ও বিচারমন্ত্রী শ্রী রবিশঙ্করপ্রসাদ এই ধরণের ডিজিটাল উদ্ভাবনের জন্য সুপ্রিম কোর্টের প্রশংসা করেন। এই অনুষ্ঠানে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রীবুদ্ধপূর্ণিমা উপলক্ষ্যে উপস্হিত সকলকে অভিনন্দন জানান। তিনি আজকের দিন ১০-ই মে-রকথা স্মরণ করে বলেন, এই দিন ১৮৫৭ সালে ভারতের প্রথম স্বাধীনতা যুদ্ধ শুরু হয়েছিল। প্রধানমন্ত্রী এলাহাবাদের ২-রা এপ্রিলেরঅনুষ্ঠানে অবকাশকালীন সময়ে অন্ততপক্ষে কয়েকটি দিনে শুনানির জন্য বিচারকদের মামলাগ্রহণ বিষয়ে ভারতের প্রধান বিচারপতির আবেদনের কথা স্মরণ করেন। তিনি বলেন, এই দৃষ্টিভঙ্গীর মধ্যে সদর্থক পরিবর্তনের এক বার্তা রয়েছে এবংএতে দায়িত্বশীলতার এক ধারণা কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী বলনে, এছাড়া এই দৃষ্টিভঙ্গীসাধারণ মানুষের মধ্যে আস্হা সৃষ্টি করবে যা নতুন ভারতের মূল কথা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অতীত দিনে প্রযুক্তিকে হার্ডওয়্যারের সঙ্গেসমান করে দেখা হতো এবং তাই মানসিকতায় পরিবর্তন আনা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। শ্রীমোদী বলেন, একটি প্রতিষ্ঠানের মধ্যে সমষ্টিগতভাবেই প্রযুক্তিকে কাজে লাগানো যেতেপারে। তিনি বলেন, কাগজ বিহীন কাজকর্মের এই উদ্যোগ পরিবেশকে বাঁচাবে এবং এটি ভবিষ্যৎপ্রজন্মের জন্য এক মহান কাজ। তিনি বলেন, বিভিন্ন মন্ত্রক এই উদ্যোগেরফলাফলকে কাজে লাগাচ্ছে। সাম্প্রতিক অতীতে কয়েকটি ঘটনার কথা উল্লেখ করেপ্রধানমন্ত্রী বলেন, সমাজের বিভিন্ন স্তর থেকে মানুষ দরিদ্রদের সাহায্য করতে এগিয়েএসেছেন। এই প্রসঙ্গে তিনি রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি স্বেচ্ছায় ছেড়ে দেওয়ারআন্দোলনের সফলতার কথা স্মরণ করেন। একইভাবে সারা দেশের চিকি ৎসকরা প্রতি মাসের ৯তারিখে দরিদ্র গর্ভবতী মহিলাদের বিনামূল্যে চিকি ৎসার যে উদ্যোগ নিয়েছেন, তার উল্লেখ করেন। একইভাবে দরিদ্র মানুষকে বিনা অর্থেআইনগত সাহায্য দেওয়ার জন্য আইনজীবিদের প্রতি তিনি আহ্বান জানান। মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিব মিঃ অ্যাশটন কার্টার মঙ্গলবার দেখা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে ক্রমপ্রসারমান দ্বিপাক্ষিক প্রতিরক্ষা সহযোগিতার বিষয়টিতে সন্তোষ প্রকাশ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রতিরক্ষা প্রযুক্তি এবং বাণিজ্যিক উদ্যোগ সম্পর্কে দু’দেশের মধ্যে আলাপ-আলোচনার আবহে তাঁর ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির চিন্তাভাবনা প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেও সম্প্রসারিত হবে বলে তিনি বিশেষভাবে আশাবাদী। দক্ষিণ এশিয়া এবং এশীয়-প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল সম্পর্কে কথাবার্তা হয় প্রধানমন্ত্রী ও মার্কিন প্রতিরক্ষা সচিবের মধ্যে। প্রস্তাবিত চুক্তির আওতায় যে যে বিষয়ে সহযোগিতা প্রসারের কথা বলা হয়েছে,তার মধ্যে রয়েছে : ১) সার্বজনীন স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ২) স্বাস্থ্য ব্যবস্থার পরিচালন ও ব্যবস্থাপনা ৩) স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে তথ্য প্রযুক্তি ও পরিষেবা ৪) স্বাস্থ্য সম্পর্কিত গবেষণা প্রচেষ্টা ৫) জাতীয় স্বাস্থ্য পরিসংখ্যান ৬) স্বাস্থ্য ক্ষেত্রে বিনিয়োগ ও স্বাস্থ্য অর্থনীতি ৭) ক্রনিক রোগ ও ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ ৯) যক্ষ্মা রোগ নির্ণয়, তার চিকিৎসা এবং প্রয়োজনীয় ওষুধপত্রের ব্যবস্থা ১০) ওষুধ ও চিকিৎসা সংক্রান্ত সাজসরঞ্জাম উৎপাদন ১১) স্বাস্থ্য সম্পর্কিত অন্যান্য ক্ষেত্র ২০১৭-র বাজেটঅধিবেশন আজ শুরু হতে চলেছে। অধিবেশন চলাকালীন সংসদে রাষ্ট্রপতির ভাষণ, বাজেটপ্রস্তাব পেশ এবং বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ের ওপর আলোচনা ও বিতর্ক অনুষ্ঠিত হবে। সাম্প্রতিকঅতীতে সবকটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গেই পৃথক পৃথকভাবে এবং সমষ্টিগতভাবে আলাপ-আলোচনা করাহয়েছে। দেশের জনসাধারণের বৃহত্তর স্বার্থে সংসদের এই অধিবেশনকে যাতে গঠনমূলকবিতর্কের কাজে ব্যবহার করা যায়, তা নিশ্চিত করা সংশ্লিষ্ট সকলেরই অবশ্য কর্তব্য। এই প্রথমবারকেন্দ্রীয় বাজেট পেশ হতে চলেছে পয়লা ফেব্রুয়ারি তারিখে। আপনাদের হয়তো মনে আছে যে,এর আগে কেন্দ্রীয় বাজেট পেশ করা হ’ত বিকেল পাঁচটার সময়। কিন্তু অটল বিহারীবাজেপেয়ী সরকার ক্ষমতায় আসার পর বাজেট পেশের সময়ে বিশেষ পরিবর্তন ঘটানো হয় এবংসংসদের অধিবেশনের সূচনাতেই বাজেট পেশ করার রীতি চালু করা হয়। আরেকটি নতুনপ্রথা চালু হতে চলেছে আজ থেকে। বাজেট পেশের সময় আরও এক মাস এগিয়ে নিয়ে আসা ছাড়াওরেল বাজেটকে অন্তর্ভূক্ত করা হয়েছে সাধারণ বাজেটের মধ্যেই। সদ্য অনুষ্ঠিত বিধানসভা নির্বাচনে জয়লাভের জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকেঅভিনন্দন জানিয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ। চুক্তির লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলি সফল করে তুলতে দ্বি-পাক্ষিক সম্মতিতে ছকে ফেলা হবে একটি কর্মপরিকল্পনা। স্বল্প এবং মধ্য মেয়াদি কর্মসূচীর ভিত্তিতে সহযোগিতা সম্প্রসারণের কথা বলা হয়েছে চুক্তিটির আওতায়। কারণ ওই দেশের সমবায়ের বিকাশ ও উন্নয়নে ভারতের সমবায় সংস্হাটির জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগাতে ইচ্ছুক মরিশাস প্রশাসন। আজ সাত নম্বর রেস কোর্স রোডে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে তিনটি স্বর্ণ প্রকল্পের সূচনা করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই তিনটি প্রকল্প হল – গোল্ড মানিটাইজেশন স্কিম, সভ্‌রিন গোল্ড বন্ড স্কিম এবং ইন্ডিয়া গোল্ড কয়েন্‌স। এই উপলক্ষে তাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী এই প্রকল্পগুলিকে ‘সোনায় সোহাগা’ বলে বর্ণনা করেন। পশ্চাদপদ শ্রেনীর জাতীয় কমিশন (এন সি বি সি) এর পরামর্শ অনুযায়ী জাতি অথবা সম্প্রদায়ের নাম অন্তর্ভুক্তি অথবা সংশোধনের মাধ্যমে কেন্দ্রীয় ও বি সি তালিকায় উপযুক্ত সংশোধনীর জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা গুজরাট ও উত্তরাখন্ড রাজ্য দুটির জন্য অন্যান্য পশ্চাদপদ শ্রেণীর(ও বি সি)কেন্দ্রীয় তালিকার সংশোধনের জন্য অনুমোদন দিয়েছে| বিশেষভাবে সংরক্ষিত এলাকাগুলিতে যেসমস্ত নির্মাণকাজের দায়িত্বশুধুমাত্র সরকারি পূর্ত দপ্তরের ওপরেই ন্যস্ত করা যায় সেইসমস্ত প্রকল্পের রূপায়ণেএই সংশোধন প্রস্তাব বিবেচনার জন্য পেশ করা হয় মন্ত্রিসভার কাছে। এর ফলে নিষিদ্ধ ও সংরক্ষিত এলাকাগুলিতে কেন্দ্রীয় সরকারের নির্মাণসংক্রান্ত বিভিন্ন কাজের ক্ষেত্রে অসুবিধা দেখা দেয়। ২০১৬-র অক্টোবরে ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত যে মউটি স্বাক্ষরিত হয়েছিল, সে সম্পর্কে আজ কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিশদভাবে অবহিত করা হয় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে।বৈঠকে নেতৃত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী স্বয়ং। যৌথ উদ্যোগে যে সমস্ত গবেষণা ও অনুসন্ধানের কাজ চালানো হবে তাতে বৈজ্ঞানিকপ্রকল্প গড়ে তোলার কাজে পরস্পরকে সাহায্য ও সহযোগিতা করাও এই মউ স্বাক্ষরের অন্যতমউদ্দেশ্য । ভারত ও রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত মউটি কার্যকর থাকছে পরবর্তী পাঁচ বছরেরজন্য। মন্ত্রিসভার এই প্রস্তাবের ফলে কেন্দ্রীয় স্বাস্হ্য পরিষেবা-সহ অন্যান্য মন্ত্রক, দপ্তর ও কেন্দ্র অধীনস্ত সংস্হাগুলির চিকিৎসক যাদের বয়স ৬২ বছরের বেশি, তাদের চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞ হিসেবে নিজেদের ক্ষেত্রেই কাজ করার বিষয়টি সুনিশ্চিত হবে। দিল্লী ক্যান্টনম্যান্টের চতুর্থ কেন্দ্রীয় বিদ্যালয়টি ১৯৯৪-এ স্হাপিত হওয়ার পর থেকে এর পঠন-পাঠন অস্হায়ীভাবে এক অন্য ভবনে চলছিল। বর্তমানে এই বিদ্যালয়ের পড়ুয়ার সংখ্যা ৯৫৬। আমারপ্রিয় দেশবাসী, নমস্কার! আর মাত্র কয়েক ঘণ্টা পরেইবছর বদলে যাবে, কিন্তু আমাদের বার্তালাপের এই ধারাবাহিকতা চলতেই থাকবে। আগত নতুনবছরে আমরা আরও অনেক নতুন নতুন কথা বলব, নতুন অভিজ্ঞতা share করব। আপনাদেরসবাইকে জানাই নতুন বছর, ২০১৮-র অনেক অনেক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন! কিছুদিন আগেই সারা পৃথিবী জুড়ে ধুমধাম করে পালিত হলক্রিসমাসের উৎসব। সারা ভারত জুড়েও এই উৎসব অত্যন্ত হর্ষোল্লাসের সঙ্গে পালন করাহয়। ক্রিসমাসের এই সময়টিতে আমরা যীশুখ্রিস্টের শিক্ষা ও উপদেশকে মনে করি, আর যীশুযে কথাটিতে সবচেয়ে বেশি জোর দিতেন, তা হল – সেবা ভাব। এই সেবা ভাবনার সারসত্যটিবাইবেলেও পরিলক্ষিত হয়। এর থেকেই বোঝা যায় সেবার গুরুত্ব কতটা অপরিসীম! সারাপৃথিবী জুড়ে ছড়িয়ে আছে কতই না জাতি, ধর্ম, রঙ, বর্ণের সমাহার, কিন্তু সেবা ভাবনা,মানবিক মূল্যগুলির মধ্যে অতুলনীয় ও অনন্য। আসুন, আমরা এই সমস্ত মহাপুরুষদের এবং এই পবিত্র দিনগুলিকে স্মরণকরার সঙ্গে সঙ্গে আমাদের পরম্পরা এবং মানবিক মূল্যবোধগুলিকেও মনে রাখি। এতে নতুনচেতনা, নতুন প্রাণশক্তি সঞ্চার করি এবং নিজেরাও তা পালন করি। প্রিয় দেশবাসী, এই বছরটি ছিল গুরু গোবিন্দ সিংহ-জীর ৩৫০-তমপ্রকাশ পর্বের বছরও। একাধারে গুরু, কবি, দার্শনিক, মহান যোদ্ধা – এই সমস্ত ভূমিকায় তিনিমানুষকে নিরন্তর প্রেরণা জুগিয়ে গেছেন। তাঁর জীবনের প্রতিটি মুহূর্ত ছিল প্রেম, ত্যাগ ও শান্তিরবাণীতে ভরা। আর এই বৈশিষ্ট্যগুলি ছিল তাঁর মহান ব্যক্তিত্বেও। আমার সৌভাগ্য যে, এইবছরের শুরুতে গুরু গোবিন্দ সিংহ-জীর ৩৫০-তম জয়ন্তী উপলক্ষ্যে পটনাসাহিবে আয়োজিত‘প্রকাশোৎসব’-এ আমি সামিল হতে পেরেছিলাম। আসুন, আমরা প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হই গুরু গোবিন্দ সিংহ-জীর শিক্ষাএবং তাঁর মহান জীবন দর্শন থেকে আমরা প্রেরণা নেব ও আমাদের জীবনে তাঁর আদর্শকে মেনেচলব। পয়লা জানুয়ারি, ২০১৮ অর্থাৎ, আগামীকালটি আমার মতে একটি বিশেষ দিন। আপনারনিশ্চয়ই এই ভেবে আশ্চর্য হচ্ছেন যে, নতুন বছর তো প্রত্যেকবার আসে আর পয়লাজানুয়ারিও প্রত্যেকবার আসে, এতে আর ‘বিশেষ দিন’ হওয়ার কী আছে? কিন্তু যখন আমি বলছিএটি এক ‘বিশেষ দিন’, তখন আমি সত্যিই বলতে চাই যে এটি এক বিশেষ দিন। মতদানের শক্তি গণতন্ত্রের সবচেয়ে বড় শক্তি। লক্ষ লক্ষ মানুষের জীবনেইতিবাচক পরিবর্তন আনতে ভোটই সবচেয়ে শক্তিশালী ও প্রভাবশালী মাধ্যম। কারণ, মনেরাখবেন, আপনিও একবিংশ শতকের ভারত নির্মাণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারেন আর পয়লাজানুয়ারি থেকেই এর শুরু হতে যাচ্ছে। ‘মন কি বাত’-এর এবারের পর্বে আমি ১৮ থেকে ২৫ বছরের টগবগেজীবনীশক্তিতে ভরপুর, দৃঢ় নিশ্চয়ী যুবাশক্তিকে বিশেষ ভাবে সম্বোধন করতে চেয়েছিলাম।আমি মনে করি এরা নতুন ভারতের যুবশক্তি – New India Youth । New India Youth -এরমানে হল – আনন্দ, উৎসাহ, জীবনীশক্তি। আমার বিশ্বাস প্রাণপ্রাচুর্যে ভরপুর এইযুবশক্তির দক্ষতা ও শক্তির ওপর ভর করেই আমাদের New India -র স্বপ্নবাস্তবায়িত হবে। New India – যেখানে সবার জন্য থাকবে সমান সুযোগ,যেখানে সবার আশা-আকাঙ্ক্ষা স্বপ্ন পাবে পূর্ণতা। নতুন ভারত, যার চালিকা শক্তি হবেশান্তি, একতা ও সদ্‌ভাবনা। আমার নতুন ভারতের যুবশক্তি New India Youth , তোমরা এগিয়েএসো, ভাবো কীভাবে সাকার হবে New India –র স্বপ্ন। নিজেদের জন্য একটি রাস্তাতৈরি কর, তোমরা যাদের সঙ্গে যুক্ত, তাদেরকেও নিজেদের সঙ্গে যুক্ত করো, আর এইভাবেদল সমৃদ্ধ হোক, এগিয়ে চলুক। তোমরাও এগিয়ে চল, দেশও এগিয়ে যাক। আপনাদের সঙ্গে কথা বলতে বলতে একটা ভাবনা আমার মনে এল,ভারতের প্রতিটি জেলাতে আমরা কি Mock Parliament –এর আয়োজন করতে পারি? যেখানে ১৮ থেকে ২৫বছরের যুবক-যুবতীরা একসঙ্গে বসে New India –র ব্যাপারে চিন্তাভাবনা করবে, দিশাখুঁজবে, পরিকল্পনা তৈরি করবে? ভাববে, কি করে আমরা ২০২২-এর আগেই আমাদের পরিকল্পনারূপায়ন করবো? কি করে আমরা এমন এক ভারতের নির্মাণ করব, যার স্বপ্ন আমাদের স্বাধীনতাসংগ্রামের বীর যোদ্ধারা দেখেছিলেন? মহাত্মা গান্ধী স্বাধীনতার আন্দোলনকেজন-আন্দোলনের রূপ দিয়েছিলেন। আমি মনে করি – ১৫-ই আগস্টের আশেপাশে কোন এক সময়ে দিল্লিতেএকটি MockParliament –এর আয়োজন করা হোক, যাতে প্রতিটি জেলা থেকে বাছাই করা একজন যুবা অংশ নেবেন ও আলোচনা করবে কীভাবে আগামী পাঁচ বছরের মধ্যে New India –রস্বপ্ন সাকার করা যায়। সংকল্প থেকে সিদ্ধিতে কীভাবে পৌঁছান যায়। আজ তরুণদের জন্য অনেকনতুন সুযোগ তৈরি হয়েছে। স্কিল ডেভলপমেন্ট থেকে শুরু করে ইনোভেশন আরএন্টারপ্রেনারশিপে আমাদের তরুণরা এগিয়ে আসছে এবং সফল হচ্ছে। আমি চাইব যে এই সবপ্রকল্পের খবর এই ‘ নিউ ইন্ডিয়া ইউথ ’ -এর কোনো এক জায়গায় কীভাবে পাওয়া যেতেপারে তার জন্য ভাবনাচিন্তা হোক আর এ ব্যাপারে এমন এক ব্যবস্থা গড়ে তোলা হোক যাতেআঠেরো বছর বয়স পূর্ণ হতেই এই জগতের ব্যাপারে, এই যাবতীয় জিনিস সম্পর্কে সহজভাবেজানতে পারে সে, আর এক্ষেত্রে আবশ্যিক লাভ যেন করতে পারে সে। প্রিয়দেশবাসী, আগের ‘ মন কি বাত ’ অনুষ্ঠানে আমিপজিটিভিটি নিয়ে কথা বলেছিলাম আপনাদের সঙ্গে। সংস্কৃত একটি শ্লোক মনে আসছে আমার – ইংরেজিতেও সবাই বলেন – পেসিমিজ্‌ম লীড্‌সটু উইক্‌নেস্‌, অপ্‌টিমিজ্‌ম টু পাওয়ার। আমি আগের ‘ মন কি বাত ’ অনুষ্ঠানেদেশবাসীদের প্রতি আবেদন রেখেছিলাম যে ২০১৭ সালে নিজের পজিটিভ মুহূর্তগুলি শেয়ারকরুন আর এক পজিটিভ অ্যাটমসফিয়ারে ২০১৮-কে স্বাগত জানান। আমি খুব খুশি যে মানুষজনবিপুল সংখ্যায় সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম, ‘মাইগভ’ আর ‘নরেন্দ্রমোদী অ্যাপ’-এঅত্যন্ত পজিটিভ রেসপন্সদিয়েছেন, নিজের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। ‘পজিটিভ ইন্ডিয়া হ্যাশট্যাগ’-সহ লক্ষ লক্ষট্যুইট করা হয়েছে যা প্রায় দেড়শো কোটিরও বেশি মানুষের কাছে পৌঁছেছে। এক অর্থেপজিটিভিটির যে সঞ্চার, তা ভারতে শুরু হয়ে গোটা বিশ্বে ছড়িয়ে পড়েছে। যে ট্যুইট আররেসপন্স এসেছে তাসত্যিই ইন্সপায়ারিং ছিল। এক সুখের অনুভূতি ছিল। কিছু দেশবাসী এই বছরে যে সব ঘটনাতাঁদের মনে বিশেষ প্রভাব ফেলেছে,ইতিবাচক প্রভাব ফেলেছে সেই সব ঘটনা নিয়ে আলোচনা করেছেন। কিছু মানুষ নিজেরব্যক্তিগত উপলব্ধিও শেয়ার করেছেন। আমি ময়ূর বিহার, পকেট ওয়ান, ফেজ ওয়ান, দিল্লিতে থাকি। # আমারনাম জ্যোতি রাজেন্দ্র বাড়ে। আমি বোডল থেকে কথা বলছি। ওই যে এক টাকা কেটে নেয়বীমায়, সেই বীমা করিয়েছিল আমার স্বামী। আর অ্যাকসিডেন্টে তার মৃত্যু হয়। সেই সময়আমাদের কী অবস্থা হয়েছিল তা আমরাই জানি। সরকারের এই সহায়তায় আমাদের খুব উপকারহয়েছিল আর এতে আমরা পরিস্থিতির কিছুটা সামাল দিতে পেরেছিলাম। আমাদের গ্রামের পাশ দিয়ে, ভিন্নর গ্রাম থেকে ২০১৭ সালে ন্যাশনালহাইওয়ে তৈরি হয়েছে। এই কারণে আমাদের রাস্তা খুব ভালো হয়ে গিয়েছে আর বিজনেসও বাড়তেচলেছে। বাস্তবে এটাই তো ‘ নিউ ইন্ডিয়া ’ যা আমরা সবাই মিলেনির্মাণ করছি। আসুন এই সব ছোট-ছোট আনন্দ নিয়ে আমরা ২০১৮ সালে প্রবেশ করি, নতুনবছরের শুভারম্ভ করি আর ‘ পজিটিভ ইন্ডিয়া ’ র লক্ষ্যে দৃঢ় পদক্ষেপ নিই। যখনআমরা সবাই পজিটিভিটির কথা বলছি তখন আমারও একটা কথা শেয়ার করতে ইচ্ছে হচ্ছে। অতিসম্প্রতি কাশ্মীরের প্রশাসনিক সেবার টপার অঞ্জুম বশির খান খটক-এর প্রেরণাদায়ীকাহিনীর কথা জানতে পারলাম আমি। উনি উগ্রপন্থা আর ঘৃণার দংশন থেকে বেরিয়ে এসেকাশ্মীর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ সার্ভিসের পরীক্ষায় টপ করেছেন। আপনার জেনে হয়রান হয়েযাবেন যে ১৯৯০ সালে উগ্রপন্থীরা ওনার পৈতৃক বাড়ি জ্বালিয়ে দিয়েছিল। ওখানেউগ্রপন্থা আর হিংসা এত বেশি ছিল যে ওনার পরিবারকে নিজেদের পৈতৃক ভিটে ছেড়ে বেরিয়েআসতে হয়েছিল। একটি ছোট শিশুর চারপাশে এত হিংসার বাতাবরণ হৃদয়ে অন্ধকার আর তিক্ততাসৃষ্টির জন্য যথেষ্ট ছিল – কিন্তু অঞ্জুম এমনটা হতে দেয় নি। সেনিজের জন্য আলাদা এক পথ বেছে নেয় – জনগণের সেবার পথ। সে প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে বেরিয়ে এসেনিজের সফলতার কাহিনী নিজেই লেখে। আজ সে শুধু জম্মু আর কাশ্মীরেরই নয় বরং গোটাদেশের যুবকদের প্রেরণ আহয়ে উঠেছে। অঞ্জুম প্রমাণ করেছে যে পরিস্থিতি যতই খারাপ হোকনা কেন, ইতিবাচক কাজের মাধ্যমে নিরাশার মেঘকেও বিনষ্ট করা যায়। এই গত সপ্তাহেই জম্মু-কাশ্মীরের কয়েকজন কন্যার সঙ্গে সাক্ষাতেরসুযোগ হল আমার। তাদের সঙ্গে আমি কথা বলাম, কোথাও নিরাশার চিহ্নটুকুও ছিল না – উৎসাহ ছিল, আনন্দছিল, শক্তি ছিল, স্বপ্ন ছিল, সঙ্কল্প ছিল। আমার প্রিয় দেশবাসী, শুধু আমাদের দেশেরইনয়, যখনই বিশ্বের বিখ্যাত ধার্মিক স্থানের চর্চা হয় তখন কেরলের সবরীমালা মন্দিরেরআলোচনা হওয়া খুব স্বাভাবিক। বিশ্বখ্যাত এই মন্দিরে ভগবান আয়াপ্পাস্বামীর আশীর্বাদনিতে প্রতি বছর কোটি কোটি শ্রদ্ধানত মানুষ সেখানে উপস্থিত হন। যেখানে এত বিপুলসংখ্যায় শ্রদ্ধানত মানুষ আসেন, যে স্থানের এত বড় মাহাত্ম্য, সেখানে স্বচ্ছতা বজায়রাখা কত বড় চ্যালেঞ্জ হতে পারে? আর বিশেষ করে সেই জায়গায় যা পাহাড় আর জঙ্গলেরমধ্যে অবস্থিত। সে অভিযানেরনিয়ম হল একজন তীর্থযাত্রী যতক্ষণ না স্বচ্ছতার জন্য কিছু না কিছু শারীরিক শ্রমদিচ্ছেন, তাঁর পূণ্যযাত্রা সম্পূর্ণ হবে না। এই অভিযানে ছোট-বড়কোন ভেদ নেই। প্রত্যেক তীর্থযাত্রী ভগবানের পূজার অংশ হিসেবে স্বচ্ছতা কর্মকাণ্ডেকিছু না কিছু ভাবে অংশগ্রহণ করছেন, আবর্জনা পরিষ্কারের কাজ করছেন। প্রত্যেক সকালেএই সাফাইয়ের অদ্ভুত এক দৃশ্য দেখা যায় আর সমস্ত তীর্থযাত্রী তাতে সামিল হন। ওখানে কঠোর ব্রত পালনের সঙ্গে সঙ্গে কঠোর সংকল্পওএকসঙ্গে চলেছে। স্বচ্ছতার জন্য সারা দেশেব্যাপক স্তরে প্রচেষ্টা চলছে। গ্রামীন ও শহরের সব জায়গায় বিপুল জনগণ অংশগ্রহণকরছেন, তাতে পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। শহর স্তরে স্বচ্ছতার অগ্রগতি পরখ করারজন্য আগামী ২০১৮-র ৪-ঠা জানুয়ারি থেকে ১০-ই মার্চের মধ্যে দুনিয়ার সব থেকে বড় সার্ভে ‘স্বচ্ছসর্বেক্ষণ ২০১৮’-র আয়োজন করা হবে। এই কর্মসূচি চার হাজারের বেশি শহরের প্রায়চল্লিশ কোটি জনগণের মধ্যে করা হবে। এই সার্ভের জন্য আলাদা আলাদাদল শহরগুলো ইন্‌স্পেকশন করবে। আপনার পাড়া, আপনার মহল্লা,আপনার শহর অন্যদের থেকে পিছিয়ে না পড়ে তা নিয়ে আপনারা সচেতন হয়ে উঠুন। আমার পুরো বিশ্বাস, আপনারা ঘরদোরের শুকনো আবর্জনা এবং ভেজা আবর্জনা আলাদা করেযথাক্রমে নীল আর সবুজ ডাস্টবিনে ফেলছেন। আসুন, এই শপথেরসঙ্গে পূজনীয় বাপুকে স্মরণ করি এবং স্বচ্ছ ভারতের সঙ্কল্প নিয়ে নিজেদের পুরুষকারেরউত্তরণ ঘটাই। আমার প্রিয় দেশবাসী, কিছু কিছু কথা আপাতদৃষ্টিতে খুবই ছোট বাসামান্য মনে হয়, কিন্তু একটা সমাজের ক্ষেত্রে তা সুদূরপ্রসারী হয়ে যায়। আজ ‘মন কিবাত’ এই কার্যক্রমে এমনই একটি ঘটনার উল্লেখ করছি। আমার চেনা-পরিচিত জগৎ থেকে জানলামকোনো মুসলিম মহিলা যদি হজ করতে যেতে চায় তবে মহরম অর্থাৎ পুরুষ অভিভাবক ছাড়া তিনিযেতে পারবেন না। যখন প্রথম এই বিষয়টা আমার কানে এল, ভাবলাম, এটা কেন হবে? এমন discrimination কেন থাকবে? এর গভীরে যখন গেলাম, আমি হতবাক হয়ে গেলাম।স্বাধীনতার ৭০ বছর পরেও এই বাধ্যবাধকতা আমরাই চালু রেখেছি! এমন কি কিছুমুসলিম দেশেও এমন নিয়ম নেই! অথচ, আমাদের দেশের মুসলিম মহিলাদের সে অধিকার দেওয়াহয়নি। আমার অত্যন্ত ভালো লেগেছে, আমাদের সরকার এই ব্যাপারে মনোযোগ দিয়েছে। আমাদের Ministry of MinorityAffairs এই বিষয়ে জরুরি পদক্ষেপ নিয়েছে এবং ৭০ বছরের পুরনো এই পরম্পরাপরিবর্তন করে ঐ প্রতিবন্ধকতা তুলে দিয়েছে। আজ একজন মুসলিম মহিলা মহরম ছাড়াই হজকরতে যেতে পারবেন এবং আমার ভালো লেগেছে এবারে প্রায় ১৩০০ মুসলিম মহিলা মহরম ছাড়াহজ যাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন এবং দেশের বিভিন্ন অংশ থেকে – কেরল থেকে উত্তরভারত –সব জায়গা থেকে মুসলিম মহিলারা হজে যাওয়ার ইচ্ছে প্রকাশ করেছেন। সংখ্যালঘু বিষয়কমন্ত্রণালয়কে আমি পরামর্শ দিয়েছি, যে মহিলারা একলা হজ-এ যেতে চাইছেন, তাঁদের সেআবেদনে যেন অনুমতি মিলে যায়। সাধারণভাবে হজ-এ যাওয়ার জন্য লটারির ব্যবস্থা আছে।কিন্তু আমি চাই, যে মহিলারা একলা হজে যেতে আগ্রহী, তাঁদের এই লটারির বাইরে রেখেস্পেশ্যাল ক্যাটেগরি হিসেবে যেন বিচার করা হয়। আমি পরিপূর্ণ বিশ্বাসের সঙ্গে বলছিএবং এ আমার দৃঢ় ধারণা, ভারতের বিকাশযাত্রা আমাদের নারীশক্তি ও তাদের প্রতিভারভরসায় এগিয়ে যাচ্ছে এবং এগোতে থাকবে। আমাদের প্রচেষ্টা থাকবে আমাদের মহিলারাপুরুষদের মতই সমান অধিকার পাবেন, সমান সুযোগ পাবেন যাতে প্রগতির পথে সমান ভাবেঅংশগ্রহণ করতে পারেন। আমার প্রিয় দেশবাসী, ২৬-শে জানুয়ারি আমাদের দেশের এক ঐতিহাসিকদিন। কিন্তু ২৬-শে জানুয়ারি, ২০১৮ দিনটিকে বিশেষভাবে মনে রাখতে হবে। ভারতেরইতিহাসে এর আগে এমনটা কখনও হয়নি। ২০১৭ বছরটি ছিল আসিয়ানভুক্ত দেশগুলি ও ভারত – এইদুই পক্ষের জন্যই উল্লেখযোগ্য। ‘আসিয়ান’ এবার পঞ্চাশ বছর পূর্ণ করল এবং ২০১৭ সালআসিয়ান-ভুক্ত দেশগুলির সঙ্গে ভারতের সমঝোতার ২৫ বছর পূর্ণ হয়েছে। ২৬-শে জানুয়ারিবিশ্বের দশজন মহান নেতার একসঙ্গে মিলিত হওয়ার ঘটনা আমাদের কাছে অত্যন্ত গর্বের। নতুন বছরআপনাদের সবার জন্য সুখ, সমৃদ্ধি ও খুশি আনুক। আমরা সবাই নতুন উদ্যোগ, নতুন উৎসাহ,নতুন আশা ও সংকল্প নিয়ে অগ্রসর হই এবং দেশও এগিয়ে চলুক। জানুয়ারি মাসে সূর্যেরউত্তরায়ণ হয় এবং এসময় মকর সংক্রান্তি পার্বণ পালন হয়। এটি প্রকৃতির সঙ্গেসম্পর্কিত একটি পরব। একদিকে আমাদের প্রত্যেক পার্বণ কোনও না কোনভাবে প্রাকৃতিকঘটনার সঙ্গে জুড়ে রয়েছে, কিন্তু বৈচিত্র্যে ভরা আমাদের সংস্কৃতিতে প্রকৃতির এইঘটনাগুলি পালন করার পদ্ধতি ভিন্ন। এইসব পার্বণের নামআলাদা আলাদা কিন্তু এর গভীরে একটাই তত্ত্ব – প্রকৃতি ও কৃষির মেলবন্ধন। সমস্ত দেশবাসীকে সব পার্বণের জন্য শুভেচ্ছা জানাই। আরেকবারআপনাদের সবাইকে নববর্ষ ২০১৮’র শুভেচ্ছা! অনেক অনেক ধন্যবাদ! এক বিশেষশুভক্ষণে আজ আমরা সমবেত হয়েছি এখানে। গতকাল আমারতেলেগু ভাই ও বোনেরা পালন করেছেন ভোগী উৎসব। ভারতেরউত্তরাঞ্চলের বিশেষত, পাঞ্জাবের বন্ধুরা উদযাপন করেছেন লহরী। আজ হ’ল মকরসংক্রান্তির দিন। মাঘ বিহু উৎসবপালিত হচ্ছে অসমের জনসমাজে। এবং এখানেঅর্থাৎ তামিলনাডুতে পালিত হচ্ছে পোঙ্গল। পোঙ্গল হ’লকৃতজ্ঞতা জ্ঞাপনের উৎসব – সূর্য দেবতার উদ্দেশ্যে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন, কৃষিকাজেরউপকারী প্রাণীদের উদ্দেশ্যে ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এবং নিরন্তরভাবে প্রাকৃতিকসম্পদের যোগানের জন্য ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন প্রকৃতিমাতাকে। আমাদেরসংস্কৃতি তথা ঐতিহ্যের মূল শক্তিই হ’ল প্রকৃতির সঙ্গে সম্প্রীতি। উত্তর থেকেদক্ষিণ, পূর্ব থেকে পশ্চিম, সারা দেশই এখন উৎসবে মাতোয়ারা। কারণ, উৎসব হ’লবেঁচে থাকার উৎসব। উৎসবের মধ্যদিয়ে জেগে ওঠে একাত্মতাবোধ। যা গড়ে তোলেসুন্দর এক ঐক্যের বন্ধন। এই সমস্ত উৎসবপালনের জন্য দেশবাসীকে আমার অভিনন্দন। মকর সংক্রান্তিহ’ল, মকর রাশিতে সূর্য পরিক্রমার এক সন্ধিক্ষণ। অধিকাংশ মানুষই মনে করেন যে, মকরসংক্রান্তি অর্থ হ’ল – কঠোর শৈত্য এবং প্রখর উষ্ণতা থেকে মুক্তির লক্ষ্যে একউজ্জ্বল দিনের আগমন বার্তা। আজ আমরা যেউৎসবগুলি পালন করছি, তার মাধ্যে কয়েকটি আবার ফসল তোলার উৎসবের সঙ্গে যুক্ত। জাতির মুখেঅন্ন তুলে দেওয়ার লক্ষ্যে দেশের যে কৃষকরা নিরলস পরিশ্রম করে চলেছেন, এই উৎসবতাঁদের জীবনে সমৃদ্ধি বহন করে নিয়ে আসুক, এই প্রার্থনা জানাই। তুঘলকের ৪৭তম বার্ষিকী উপলক্ষে আমার প্রিয় বন্ধু শ্রী চোরামস্বামীর উদ্দেশে আমি শ্রদ্ধা নিবেদন করি। চো-এর মৃত্যুতেআমরা হারিয়েছি বিশেষ এক বন্ধুকে, যিনি সর্বদাই সকলকে মূল্যবান উপদেশ ও পরামর্শদিয়ে এসেছেন। তাঁর সঙ্গেআমার ব্যক্তিগত পরিচয় চার দশকেরও বেশি সময়কালের। তাই, তাঁর মৃত্যু আমার একব্যক্তিগত ক্ষতি। যে সমস্তভূমিকা তিনি পালন করে এসেছেন, তার মধ্যে তুঘলক পত্রিকার সম্পাদক হিসেবে তাঁরভূমিকা ছিল বিশেষভাবে উজ্জ্বল। দীর্ঘ ৪৭ বছর ধরে গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ এবং জাতীয়স্বার্থকে রক্ষা করার কাজে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে তুঘলক পত্রিকাটি। তুঘলক এবং চো –এই দুয়ের মধ্যে সীমারেখা টানা খুবই দূরূহ কাজ। প্রায় পাঁচ দশক ধরে তুঘলকেরদায়িত্বভার বহন করে এসেছেন তিনি। যদি কাউকে বলা হয়, ভারতের রাজনৈতিক ইতিহাস রচনাকরার জন্য, তা হলে তিনি চো রামস্বামী এবং তাঁর রাজনৈতিক ভাষ্যকে বাদ দিয়ে সেকাজকরতে পারবেন না। তাঁর সবচেয়ে বড়সাফল্য হ’ল এই যে – সমস্ত রকম বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির বিরুদ্ধে তুঘলক’কে এক বিশেষহাতিয়ার করে তুলেছিলেন তিনি। স্বচ্ছ এবং দুর্নীতিমুক্ত এক রাজনৈতিক ব্যবস্থারলক্ষ্যে তিনি সংগ্রাম করে গেছেন। তাঁর সেই সংগ্রামী মানসিকতায় তিনি কাউকেই ছেড়েকথা বলেননি। তাঁর মূলবার্তার লক্ষ্য ছিল জাতি। তাঁর সমস্ত রচনায়, চলচ্চিত্রে, নাটকে, তাঁর নির্দেশিতটেলিভিশন ধারাবাহিকে এমনকি যে কাহিনীচিত্রের জন্য তিনি চিত্রনাট্য রচনা করতেন,তাতেও প্রতিফলিত রয়েছে তাঁর এই বার্তা। তাঁরশ্লেষাত্মক লেখনী এবং তাঁর সমালোচনামূলক লেখাগুলি তাঁকে প্রিয়পাত্র করে তুলেছিলতাঁদের কাছেও যাঁরা ছিলেন তাঁর সমালোচনার মূল লক্ষ্য। এই গুণ তাঁকে অর্জন করতেহয়নি, কারণ তা অর্জন করা সম্ভব নয়। বরং, লক্ষ লক্ষ তামিল ভাষীর চোখ ও কান দিয়ে তুলে ধরা হয়েছেবিভিন্ন ঘটনা প্রবাহকে। তুঘলকের মধ্য দিয়ে শাসক ও শাসিত উভয়ের মধ্যে এক সেতুবন্ধনগড়ে তুলেছিলেন চো রামস্বামী। চো-এরচিন্তাভাবনা অনুসরণ করে তুঘলক তাঁর সাংবাদিকতার যাত্রাপথকে নিরন্তর রাখবে জেনে আমিবিশেষভাবে আনন্দিত। তুঘলকের আদর্শ ও ঐতিহ্যের যাঁরা উত্তরসূরী, তাঁদের কাঁধে এসেপড়েছে এক বিশেষ গুরুদায়িত্ব। কারণ, চো-এর চিন্তাভাবনা ও অঙ্গীকারকে অনুসরণ করানিঃসন্দেহে একটি বড় চ্যালেঞ্জ। আবার, তা অনুসরণ করার কাজে সফল হলে তামিলনাডুরসাধারণ মানুষের কাছে তা পৌঁছে দিতে পারবে এক বিশেষ পরিষেবা। শ্রীগুরুমূর্তি এবং তাঁর সমগ্র টিম এই প্রচেষ্টায় সর্বতোভাবে সফল হবেন বলেই আমি মনেকরি। রঙ্গব্যঙ্গ,শ্লেষ ও বিদ্রূপাত্মক রচনার ক্ষেত্রে চো যে এক সিদ্ধহস্ত ব্যক্তি ছিলেন – এ বিষয়েকোনও দ্বিমত নেই। আমি মনে করি,আরও বেশি রঙ্গব্যঙ্গ ও শ্লেষাত্মক রচনার প্রয়োজন রয়েছে আমাদের জীবনে। কারণ, তা সুখবহন করে আনে। রঙ্গব্ঙ্গ মানুষের ক্ষত উপশমে বিশেষ উপকারী। মুখে একটু হাসিফোটানোর কিংবা হাসিতে ঝলমল করানোর যে শক্তি তাকে নিন্দা করা বা অন্যান্য যে কোনও শক্তির থেকেই আরও বেশি ক্ষমতাশালী বলে আমিমনে করি। কারণ, হাস্যরস ও রঙ্গব্যঙ্গ মানুষের মধ্যে বিভেদ ঘটায় না বরং সম্পর্ককেআরও মজবুত করে তোলে। সত্যি কথা বলতেকি, আজকের দিনে প্রয়োজন এই বিষয়টিরই – প্রয়োজন সেতুবন্ধনের। মানুষে মানুষেসেতুবন্ধনের। প্রয়োজনবিভিন্ন সম্প্রদায়ের মধ্যে যোগাযোগের সেতু গড়ে তোলা। সমাজ ব্যবস্থাতেও প্রয়োজন এইসেতুবন্ধনের। হাস্যরসমানুষের সৃজনশীলতাকে বাড়িয়ে তোলে। কারণ, আমরা বাস করছি এমন এক যুগে, যখন একটিবক্তব্য কিংবা একটি মাত্র ঘটনা সম্ভব করে তুলতে পারে অনেক কিছুই, যা আমাদের এগিয়েযেতে সাহায্য করে। এর আগে তুঘলকেরপাঠকদের বার্ষিক বৈঠকে চেন্নাইতে ব্যক্তিগতভাবে উপস্থিত থেকেছি আমি। যেহেতু আপনাদেরএই ধরণের অনুষ্ঠানে চো-এর কন্ঠে শ্রীমদ্‌ভাগ্বত গীতার শ্লোক উচ্চারণের একটি ঐতিহ্যরয়েছে সেই কারণে শ্রী চো-এর সম্মানে আমিও এখানে একটি শ্লোক উচ্চারণ করে আমারবক্তব্য শেষ করব : তাঁর এই বহুমুখী অবদানের জন্য আসুন আমরা সকলে মিলে তাঁর উদেশে ধন্যবাদজানাই। নিয়মিতভাবেপরিকল্পনা সহায়তা যোগানোর মাধ্যমে ঋণের সুদ পরিশোধের দায়িত্ব থাকবে সরকারের। কেন্দ্রীয় সহায়তাপ্রাপ্ত সবক ’ টি উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠান এই লগ্নি সংস্থার সদস্যহওয়ার সুযোগ পাবে। এজন্য সংশ্লিষ্ট শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিকে তাদের নিজস্ব আয়ের বেশকিছুটা ঐ লগ্নি সংস্থার কাছে জমা রাখতে হবে ১০ বছরের মেয়াদে। মহামান্য রাষ্ট্রপতি দিলমা রউসেফ, মহামান্য চ্যান্সেলর এঞ্জেলা মার্কেল, মহামান্য প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে, প্রতিনিধি দলের বিশিষ্ট সদস্যরা, সংযুক্ত রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের বিষয়টি কয়েক দশক ধরেই আন্তর্জাতিক মনোযোগের কেন্দ্রবিন্দুতে পরিনত হয়েছে—যদিও দুর্ভাগ্যবশত এনিয়ে কোনো অগ্রগতি হয় নি| মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মহম্মদ সোলি তাঁর শপথ গ্রহণ অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাবার জন্য প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে স্বাগত জানান ও ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এই উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে তাঁকে আমন্ত্রণ জানানোর বিশেষ সৌজন্য দেখানোয় রাষ্ট্রপতি সোলিকে ধন্যবাদ জানান। বৈঠকে উভয় নেতা ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার ওপর গুরুত্ব দেন এবং এই অঞ্চলের সুস্থিতি বজায় রাখার চাহিদা ব্যক্ত করেন। উভয় নেতা এই অঞ্চলে এবং বিশ্বে সর্বত্র সন্ত্রাস মোকাবিলায় সহযোগিতা বাড়ানোর বিষয়ে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হন। রাষ্ট্রপতি সোলি তাঁর দেশের বর্তমান অর্থনৈতিক পরিস্থিতি সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রী মোদীকে অবহিত করেন। মালদ্বীপের জনগণকে দেওয়া প্রতিশ্রুতি রক্ষায় এবং সেদেশের উন্নয়নে নতুন সরকারকে ভারত কিভাবে সাহায্য করতে পারে, সেই পন্থা-পদ্ধতি নিয়েও দুই নেতার মধ্যে আলোচনা হয়। শ্রী সোলি সেদেশে আবাস ও পরিকাঠামো উন্নয়ন এবং দ্বীপগুলিতে জল ও পয়ঃপ্রণালী ব্যবস্থার উন্নতির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী মালদ্বীপের স্থায়ী সামাজিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে ভারতের সহযোগিতার বিষয়ে রাষ্ট্রপতি সোলিকে আশ্বস্ত করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী রাষ্ট্রপতি সোলির সুবিধা মতো যতশীঘ্র সম্ভব ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানান। রাষ্ট্রপতি সোলি সাদরে সেই আমন্ত্রণ গ্রহণ করেন। রাষ্ট্রপতি সোলির আসন্ন ভারত সফরের পরবর্তী প্রস্তুতি নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করতে সেদেশের বিদেশ মন্ত্রী ২৬ নভেম্বর ভারত সফরে আসবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীদিনে আবার সরকারি সফরে মালদ্বীপ যাবেন বলে রাষ্ট্রপতি সোলি আশা প্রকাশ করেন। ১২ জানুয়ারি স্বামী বিবেকানন্দের জন্মদিন উপলক্ষে ছত্তিশগড়ের নয়া রায়পুরে আয়োজিত জাতীয় যুব দিবসের অনুষ্ঠানটি নয়াদিল্লির রেস কোর্স রোডের বাসভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আর সেই স্বাধীনতা আজ আমাদের এক নতুন উচ্চতায় পৌঁছে দিচ্ছে। দেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে ১২৫ কোটি দেশবাসী আজ ঐক্যবদ্ধ। এই ক্ষমতা আমরা লাভ করেছি আমাদের পূর্ব পুরুষদের কাছ থেকে, যে যুগের প্রসার ও বিস্তৃতি বেদ থেকে বিবেকানন্দ, উপনিষদ থেকে উপগ্রহ পর্যন্ত। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতের লক্ষ্য হল দেশের তরুণ সমাজকে সুদক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তোলা যাতে একুশের শতক ভারতের শতক হয়ে উঠতে পারে। নকশাল মোকাবিলার মতো সমস্যা থাকলেও এই লক্ষ্যে ছত্তিশগড় যেভাবে এগিয়ে চলেছে সেজন্য রাজ্যটির বিশেষ প্রশংসাও করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রমের মর্যাদার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, জনসাধারণের মধ্যে এই বোধ ও অনুভূতিকে জাগিয়ে তুলতে হবে। তিনি বলেন, উন্নয়নের যে লক্ষ্য ভারত স্থির করেছে তার মধ্য দিয়ে গ্রামবাসী ও দরিদ্র মানুষের জীবনে পরিবর্তন সম্ভব করে তুলতে হবে। ১৬ জানুয়ারি দিল্লিতে ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আনুষ্ঠানিক সূচনা প্রত্যক্ষ করার জন্য তিনি আহ্বান জানান দেশের যুব সমাজকে। “অধ্যাপক যশপালের মৃত্যুতে আমি মর্মাহত। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নয়াদিল্লিতে রাজস্ব জ্ঞান সঙ্গমের আনুষ্ঠানিক সূচনা করেন।সেখানে তিনি ভাষণ দেন কেন্দ্র ও রাজ্যের কর প্রশাসকদের উদ্দেশে। পণ্য ওপরিষেবা কর অর্থাৎ, জিএসটি-র সুফলগুলির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, দেশেরঅর্থনৈতিক সংহতি এবং সামগ্রিক ব্যবস্থায় স্বচ্ছতা নিশ্চিত করা ছাড়াও ১৭ লক্ষেরওবেশি নতুন ব্যবসায়ীকে মাত্র দু’মাসের মধ্যেই নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে পরোক্ষ করেরআওতায়। আগামী ২০২২সাল, অর্থাৎ, স্বাধীনতার ৭৫তম বার্ষিকীর পূর্বেই দেশের কর প্রশাসনকে আরও উন্নত করেতুলতে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা স্থির করার জন্য তিনি আর্জি জানান কর প্রশাসকদেরকাছে। এর ফলে, কোন কায়েমি স্বার্থই আইনের পথ অনুসরণেরক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি করতে পারবে না। করসংক্রান্ত বহু বিষয় এখনও ঝুলে থাকায় স্পষ্টতই অসন্তোষ প্রকাশ করেন শ্রী নরেন্দ্রমোদী। তিনি বলেন, এর ফলে যে বিপুল পরিমাণ অর্থ এখনও আদায়ের অপেক্ষায় রয়ে গেছে তারসাহায্যে দেশের দরিদ্র জনসাধারণের জন্য কল্যাণমূলক কাজকর্ম চালিয়ে যাওয়া সম্ভব। এইসমস্ত বকেয়া কাজ যত দ্রুত সম্ভব সেরে ফেলার জন্য রাজস্ব জ্ঞান সঙ্গমে নির্দিষ্টকর্মপরিকল্পনা স্থির করার জন্য তিনি আর্জি জানান সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের কাছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী উত্তর-পূর্বাঞ্চলের বন্যা কবলিত রাজ্যগুলির ত্রাণ, পুনর্বাসন,পুনর্গঠন ও বন্যা মোকাবিলা সংক্রান্ত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ২,০০০ কোটি টাকারওবেশি ত্রাণ প্যাকেজের কথা ঘোষণা করেছেন। গুয়াহাটিতে একগুচ্ছ উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকেসংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলিতে বন্যা পরিস্থিতি ও ত্রাণ ব্যবস্থা পর্যালোচনার পর প্রধানমন্ত্রীএই ঘোষণা করেন। সারাদিন ধরেপ্রধানমন্ত্রী আজ অসম, অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর ও নাগাল্যান্ডের পরিস্থিতি সম্পর্কেপৃথক পৃথকভাবে বিশদ পর্যালোচনা বৈঠক করেন। সংশ্লিষ্ট রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীরা উচ্চপদস্থ আধিকারিকদের সঙ্গে নিয়ে এইসব বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন। মিজোরামের মুখ্যমন্ত্রীবৈঠকে স্বয়ং উপস্থিত হতে না পারলেও তাঁর পক্ষ থেকে একটি স্মারকপত্র পেশ করা হয়। কেবলমাত্রপরিকাঠামো ক্ষেত্রের জন্যই ১,২০০ কোটি টাকারও বেশি অর্থ কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষথেকে দেওয়া হচ্ছে। এই অর্থ সড়ক, জাতীয় সড়ক, সেতু এবং অন্যান্য ক্ষতিগ্রস্তপরিকাঠামোর মেরামতি, রক্ষণাবেক্ষণ এবং সংস্কারে ব্যবহার করা হবে। ব্রহ্মপুত্রনদের জলধারণ ক্ষমতা বাড়াতে ৪০০ কোটি টাকার দেওয়া হবে, আর এর ফলে বন্যা নিয়ন্ত্রণেওসহায়তা ঘটবে। কেন্দ্রীয়সরকার, উত্তর-পূর্ব অঞ্চলে বারংবার বন্যার মোকাবিলায় সময়বদ্ধ দীর্ঘমেয়াদি সমাধানখুঁজতে সমন্বিত প্রয়াসের জন্য একটি সমীক্ষার উদ্দেশ্যে ১০০ কোটি টাকার সংস্থানকরবে। ভারতের মোটভূমির ৮ শতাংশ নিয়ে গঠিত উত্তর-পূর্বাঞ্চলে দেশের জলসম্পদের এক-তৃতীয়াংশ রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ভারতরত্ন শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর সম্মানে একটি স্মারক কয়েন প্রকাশ করেছেন। অনুষ্ঠানে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রী বাজপেয়ী আমাদের মধ্যে আর নেই, মন এখনও তা বিশ্বাস করতে চায় না। বিশেষ এই ব্যক্তিত্বকে সমাজে সব শ্রেণীর জনগণ শ্রদ্ধা করতেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বহু বছর ধরেই শ্রী বাজপেয়ীর কন্ঠস্বর জনগণের কন্ঠস্বর ছিল। বক্তা হিসাবে তিনি ছিলেন অপ্রতিদ্বন্দ্বী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শ্রী বাজপেয়ী ছিলেন আমাদের দেশের অন্যতম সংগঠক। তিনি বলেন, শ্রী বাজপেয়ী সর্বদাই গণতন্ত্রকে প্রাধান্য দিতে চেয়েছেন। সুইডেনের সঙ্গে স্বাক্ষরিত মউ/চুক্তি ভারত ও ডেনমার্কের মধ্যে স্বাক্ষরিত মউ/চুক্তি ভারতের আবাসন এবং নগরায়ন মন্ত্রকের সঙ্গে ডেনমার্কের শিল্প-বাণিজ্য ও অর্থ বিষয়ক মন্ত্রকের স্মার্ট ও নিরন্তর নগরোন্নয়ন সম্পর্কিত এক সহযোগিতা চুক্তি। ভারতের কৃষি ও কৃষক কল্যাণ মন্ত্রকের পশুপালন, দুগ্ধোৎপাদন ও মৎস্যচাষ বিষয়ক দপ্তরের সঙ্গে ডেনমার্কের খাদ্য ও পরিবেশ মন্ত্রকের পশু চিকিৎসা ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা সম্পর্কিত দপ্তরের সহযোগিতা চুক্তি। ভারতের খাদ্য নিরাপত্তা ও গুণগত মান নির্ণায়ক কর্তৃপক্ষ এবং ডেনমার্কের পশু চিকিৎসা ও খাদ্য ব্যবস্থাপনা দপ্তরের মধ্যে স্বাক্ষরিত খাদ্য নিরাপত্তা ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসার সম্পর্কিত মউ। ভারতীয় কৃষি গবেষণা পরিষদ ও ডেনমার্কের কোপেন হেগেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান সংক্রান্ত পঠন-পাঠন দপ্তরের মধ্যে কৃষি শিক্ষা ও গবেষণা সম্পর্কিত সহযোগিতা চুক্তি। ভারত ও আইসল্যান্ডের মধ্যে স্বাক্ষরিত মউ/চুক্তি প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ধনতেরাস উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ধনতেরাসেরবিশেষ এই দিনে সকলকে শুভেচ্ছা। একে দুগ্ধক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী উন্নয়ন তথা প্রাতিষ্ঠানিকশক্তিবৃদ্ধির ওপর ভিত্তি করে বর্তমান জ্ঞানকে বিস্তীর্ণ করার উদ্দেশ্যে গবাদি পশুও মোষ-এর বংশবৃদ্ধির উন্নয়নের ক্ষেত্রে যৌথ পরিকল্পনার মাধ্যমে রূপায়িত করা হবে| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ এখানকার বিজ্ঞান ভবনে দলিত উদ্যোগপতিদের জাতীয় সম্মেলন উদ্বোধন করেন। তাঁর অভিমত, দলিত উদ্যোগপতিদের এই সমাবেশ কেবল তাঁদের কর্তব্য সম্পর্কে আলোচনার এক মাধ্যম হয়ে উঠবে না, তাঁদের কর্তব্যসাধনেও সাহায্য করবে। ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সংবিধানের নির্মাণ করেছেন বলে তিনি জনমানসে যেমন সমাদৃত, তেমনই অর্থনীতিবিদ হিসেবেও তাঁর সুনাম অব্যাহত। অনুষ্ঠানে পাঁচজন দলিত উদ্যোগপতিকে তিনি পুরস্কৃত-ও করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভাকে ভারত ও কানাডার মধ্যে স্বাক্ষরিত একটি সমঝোতা স্মারক বিষয়ে অবহিত করাহয়েছে। ২০১৮-র ২১ ফেব্রুয়ারি নতুন দিল্লিতে এই সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। “মাধ্যাকর্ষণশক্তিভেদী ক্ষেপণাস্ত্র প্রয়োগের নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য সফল ভারতীয় প্রতিরক্ষাবিজ্ঞানীদের আন্তরিক অভিনন্দন। পারস্পরিক সহযোগিতার ক্ষেত্রে উত্সাহ প্রদানে এই সমঝোতা স্মারকের প্রধানক্ষেত্রগুলো হচ্ছে: (ক) ভারত ও পোল্যান্ডের মধ্যে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এমন আইনি ও পদ্ধতিগতবিষয়গুলোর পর্যালোচনার মাধ্যমে অসামরিক বিমান পরিবহনের বাজারকে সহায়তা করা| (খ) বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে সুরক্ষা ও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করার জন্য বিমানচালনা আইন, আঞ্চলিক বিমান চালনা, উড়ান-যোগ্যতার প্রয়োজনীয়তা এবং সুরক্ষা গুণমানেরক্ষেত্রে মন্ত্রকগুলো এবং সংশ্লিষ্ট অসামরিক বিমান পরিবহন কর্তৃপক্ষের মধ্যে তথ্যও অভিজ্ঞতার আদান প্রদান| এবং/অথবা (গ) সুরক্ষা পর্যবেক্ষণ, উড়ান-যোগ্যতা, বিমান চালনা, লাইসেন্স, আইন ওপ্রয়োগ ইত্যাদি বিষয় নিয়ে নিরাপদ বিমান চালনার জন্য প্রশিক্ষণ কর্মসূচির ব্যবস্থাবা আয়োজন করা, সহযোগিতা অথবা যৌথভাবে উন্নয়ন করা| এবং/অথবা (ঘ) অসামরিক বিমান পরিবহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর প্রতিনিধিদেরঅংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে সুরক্ষিত বিমান চালনার জন্য বিমান পরিবহন সংগঠনগুলোর মধ্যেআলোচনা, যৌথভাবে সম্মেলনের আয়োজন করা এবং পেশাদারি সম্মেলন, কর্মশালা, আলোচনা ও এইধরনের কাজ করা| (ঙ) দু’পক্ষের মন্ত্রকের মধ্যে তথ্য, জ্ঞান, দক্ষতা ও অভিজ্ঞতারআদানপ্রদানের জন্য নিয়মিতভাবে আলোচনা অথবা বৈঠক করা এবং দুই ক্ষেত্রের পারস্পরিকস্বার্থ ও উন্নয়নের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সুরক্ষিত অসামরিক বিমান পরিচালনাগত উন্নয়ন| (চ) সুরক্ষিত বিমান চলাচল ও পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয় নিয়ে গবেষণাও অধ্যয়নের জন্য সহযোগিতা| দেশের বিভিন্ন প্রান্তের স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সদস্য এবং দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনার সুফলভোগীদের সঙ্গে আজ এক ভিডিও সংযোগের মাধ্যমে আলাপচারিতায় মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বিভিন্ন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর ১ কোটিরও বেশি মহিলার সঙ্গে আলাপচারিতায় যোগ দেন প্রধানমন্ত্রী। বিভিন্ন সরকারি কর্মসূচির সুফল গ্রহীতাদের সঙ্গে ভিডিও সম্মেলনের মঞ্চে এটি ছিল প্রধানমন্ত্রীর নবম মতবিনিময় অনুষ্ঠান। দেশের সর্বত্র নারী ক্ষমতায়নের প্রকৃত শক্তি অন্তর্নিহিত রয়েছে তার মধ্যেই। শ্রী মোদী বলেন, দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা – জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন-এর কাজ শুরু হয়েছে দেশের সবক’টি রাজ্যেই। এই কর্মসূচির উদ্দেশ্য হল দেশের ২.৫ লক্ষ গ্রাম পঞ্চায়েতের দরিদ্র পরিবারগুলির জন্য নিরন্তর রুজি-রোজগারের ব্যবস্থা করা। কর্মসূচিটির রূপায়ণে সাফল্যের জন্য সবক’টি রাজ্যের সংশ্লিষ্ট আধিকারিকদের অভিনন্দিত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দরিদ্র সাধারণ মানুষের, বিশেষতঃ গ্রামীণ মহিলাদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে চলেছে স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি। দেশের সর্বত্র স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির প্রসার ও বিকাশে সরকার প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও আর্থিক সহায়তা দিয়ে আসছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘মহিলা কিষাণ স্বশক্তিকরণ পরিযোজনা’র মাধ্যমে ৩৩ লক্ষেরও বেশি মহিলা কৃষিজীবীকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। গ্রাম ভারতের প্রায় ৫ কোটি মহিলার সক্রিয় অংশগ্রহণে দেশে বর্তমানে স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সংখ্যা দাঁড়িয়েছে ৪৫ লক্ষ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনার মাধ্যমে গ্রামীণ যুবকদের দক্ষতা বিকাশের ওপর বিশেষভাবে দৃষ্টি দেওয়া হয়েছে। তরুণ ও যুব সমাজের এক উন্নততর জীবন গড়ে তোলার আকাঙ্ক্ষাকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে তাঁদের কর্মসংস্থানের সুযোগ দেওয়ার পাশাপাশি, স্বনির্ভর কর্মসংস্থানেরও ব্যবস্থা করা হয়। আলাপচারিতাকালে মূল্য সংযোজন ও মূল্য শৃঙ্খলের গুরুত্বের বিষয়টিও তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। সরকারি বৈদ্যুতিন মঞ্চ ‘জেইএম’ ব্যবহার করে উৎপাদিত পণ্য বিপণনের জন্য স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির কাছে আর্জি জানান তিনি। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলির সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে তাদের সাফল্য ও অভিজ্ঞতার কথা এদিন সদস্যরা ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। মনোবল ও আত্মবিশ্বাসের সাহায্যে দরিদ্র মহিলারা যেভাবে সমস্ত রকম প্রতিকূলতার সঙ্গে সংগ্রাম করে এসেছেন, তা জেনে তাঁদের ভূয়সী প্রশংসা করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। স্বনির্ভর গোষ্ঠীগুলি কিভাবে তাঁদের জীবনে এক ইতিবাচক পরিবর্তন সম্ভব করে তুলেছে, তাও এদিন প্রধানমন্ত্রীকে জানান বিভিন্ন কর্মসূচির সুফলভোগী মহিলারা। ইন্দোনেশিয়ার জাকার্তা-পালেমব্যাঙ্গ শহরে অনুষ্ঠিত অষ্টাদশ এশিয়ান গেমস্‌-এ পুরুষদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল বিভাগে স্বর্ণ পদক জয়ী সৌরভ চৌধুরীকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ১৬ বছর বয়সী সৌরভ চৌধুরী দেশের আশীর্বাদধন্য যুবসম্প্রদায়ের সম্ভাবনা ও সাহসিকতাকেই প্রতিফলিত করে। ব্যতিক্রমী এই তরুণ খেলোয়াড় ২০১৮-র এশিয়ান গেমস্‌-এ পুরুষদের ১০ মিটার এয়ার পিস্তল প্রতিযোগিতা থেকে স্বর্ণ পদক নিয়ে এল। দূর্গা অষ্টমী পূজা উপলক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন | এই সংশোধনেরফলে জম্মু ও কাশ্মীরের পরিসংখ্যানগত তথ্য সংগ্রহ পদ্ধতিটি আরও শক্তিশালী হয়ে উঠবেবলে মনে করা হচ্ছে। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য ছাড়া দেশের অন্যত্র এই আইনটি এতদিনপ্রযোজ্য ছিল। ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে আজ শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তাঁর জন্মদিনে আমি ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়কে শ্রদ্ধা জানাই। মার্কিন কংগ্রেসের যৌথ সভায় ভাষণ দেওয়ার জন্যআমাকে আমন্ত্রণ জানানোয় আমি নিজেকে বিশেষভাবে সম্মানিত বোধ করছি। এক বিশাল সৌন্দর্যের ক্যাপিটল-এর দ্বার আমার জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়ায় ধন্যবাদ জানাই স্পিকার মহোদয়কে। আমাকে এখানে ভাষণ দেওয়ার সুযোগদানের মাধ্যমে বিশ্বের এক বৃহত্তম গণতন্ত্র এবং সেখানকার ১২৫ কোটি নাগরিককেই সম্মান জানিয়েছেন আপনারা। বিশ্বের এক বৃহত্তম গণতন্ত্রের একজন প্রতিনিধি হিসেবে প্রাচীনতম এক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রের নেতৃবৃন্দের সামনে ভাষণ দেওয়ার সুযোগ পাওয়া নিঃসন্দেহে এক ঘটনা বিশেষ। স্পিকার মহোদয়, মুক্তি ও গণতন্ত্রের আদর্শ সেনানীদের স্মৃতিকে সম্মান জানিয়েছি আমি। আর ঠিক এই কারণেই মুক্তি ও স্বাধীনতার এক শক্তিশালী বন্ধনের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে আমাদের এই দুটি গণতান্ত্রিক দেশের মধ্যে। আমাদের দুটি জাতির রয়েছে ভিন্ন ভিন্ন ইতিহাস, সংস্কৃতি, মত ও বিশ্বাস। তা সত্ত্বেও দেশের গণতন্ত্র এবং দেশবাসীর স্বাধীনতায় আমরা বিশ্বাস করি সমানভাবেই। আমাদের প্রতিষ্ঠাতা পুরুষরাও ছিলেন এই বিশ্বাসেরই অংশীদার। আধুনিক ভারত এখন ৭০তম বর্ষে উপনীত। আমার সরকারের কাছে দেশের সংবিধানই হল প্রকৃত অর্থে এক ধর্মগ্রন্থ। ঐ পবিত্র গ্রন্থে ধর্মবিশ্বাসের স্বাধীনতা, বাক্‌-স্বাধীনতা, ভোটাধিকার, নাগরিকদের সমানাধিকার – এ সমস্ত কিছুকেই স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে মৌলিক অধিকার হিসেবে। প্রতি পাঁচ বছর অন্তর আমাদের নাগরিকদের মধ্যে ৮০ কোটির মতো মানুষ তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেন। আমাদের দু’দেশের চিন্তা-নায়করা যেভাবে পরস্পরের সঙ্গে মতবিনিময় করেন এবং সমাজের গতিপথ নির্ধারণ করেন, তার মধ্য দিয়েই আমাদের এই দুটি গণতান্ত্রিক দেশের মিল ও সংযোগকে আমরা খুঁজে পাই। গান্ধীজি অহিংস আন্দোলনের যে আহ্বান জানিয়েছিলেন, তা অনুপ্রাণিত করেছিল মার্টিন লুথার কিং-কে। টাইডাল বেসিনে অবস্থিত মার্টিন লুথার কিং-এর স্মৃতিসৌধ ম্যাসাচুসেট্‌স অ্যাভিনিউতে অবস্থিত গান্ধীজির মূর্তির অবস্থান থেকে মাত্র ৩ মাইল দূরে। ওয়াশিংটনে এত কাছাকাছি এই দুটি স্মৃতি-স্মারক গড়ে তোলার মধ্যে তাঁদেরআদর্শ ও মূল্যবোধইপ্রতিফলিত হয়েছে। ডঃ বি আর আম্বেদকরের মেধা ও প্রতিভার স্ফূরণ ঘটে আজ থেকে ১০০ বছর আগে কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে তাঁর পঠন-পাঠনকালে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংবিধান তাঁকে প্রভাবিত করেছিল মাত্র তিন দশক পরেই ভারতীয় সংবিধানের খসড়া রচনার কাজে। যে আদর্শে অনুপ্রাণিত হয়ে আপনারা স্বাধীনতা সংগ্রামে উদ্ভুদ্ধ হয়েছিলেন, তা প্রজ্জ্বলিত করে আমাদের স্বাধীনতার আকাঙ্ক্ষা-দীপকে। সুতরাং, ভারতের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ি ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে যে ‘স্বাভাবিক মিত্র’ বলে বর্ণনা করেছিলেন তাতে আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই। আবার, আশ্চর্য হওয়ার কিছু নেই এই ঘটনাতেও যে স্বাধীনতার এক সাধারণ দর্শন ও আদর্শের ভিত্তিতেই গড়ে উঠেছে আমাদের দু’দেশের সম্পর্ক। সমানভাবেই আমাদের দুটি দেশের সম্পর্ককে একুশ শতকের এক বিশেষ অংশীদারিত্ব বলে প্রেসিডেন্ট ওবামার ঘোষণাতেও আশ্চর্য বা বিস্মিত হওয়ার কিছু নেই। আজ থেকে ১৫ বছর আগে ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ি এখানে দাঁড়িয়েই আহ্বান জানিয়েছিলেন, অতীতের যাবতীয় দ্বিধা-দ্বন্দ্বকেঅতিক্রম করে যাওয়ার। তখন থেকেই আমাদের বন্ধুত্বের ইতিহাস এক উল্লেখযোগ্য ঘটনা ও কাহিনীতে পরিণত হয়েছে। আমাদের এই যাত্রাপথে দিক নির্দেশকের ভূমিকায় অবতীর্ণ হয়েছে মার্কিন কংগ্রেস। যাত্রাপথের যাবতীয় বাধা-বিঘ্নের মধ্য দিয়ে সম্পর্কের সেতুবন্ধনে আমাদের সাহায্য করেছেন আপনারা। ২০০৮-এর শেষে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অসামরিক পরমাণু চুক্তিটি যখন অনুমোদিত হয় মার্কিন কংগ্রেসে তখন থেকেই আমাদের মৈত্রী সম্পর্ক এক নতুন দিকে মোড় নিতে শুরু করে। আমাদের প্রয়োজনের মুহূর্তে আপনারা পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ জানাই আপনাদের। আমাদের দুর্দিনেরও সঙ্গী হয়েছেন আপনারা। সুতরাং, আপনাদের সঙ্গে আমাদের মিল রয়েছে অনেক ক্ষেত্রেই। নর্ম্যান বোরল্যাগের প্রতিভা খাদ্য নিরাপত্তার লক্ষ্যে সবুজ বিপ্লবের জন্ম দিয়েছিল ভারতে। অতল সমুদ্র থেকে বিশাল মহাকাশ পর্যন্ত মানব প্রচেষ্টার সমস্ত ক্ষেত্রেই ব্যাপ্তি ও প্রসার ঘটেছে আমাদের অংশীদারিত্বের। জনস্বাস্থ্য, শিক্ষা, খাদ্য এবং কৃষির মতো ক্ষেত্রগুলিতে বহুদিনের নানা সমস্যা মেটাতে সাহায্য করেছে দু’দেশের বিজ্ঞান ও প্রযুক্তিগত সহযোগিতা। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রেও আমাদের সম্পর্ক উত্তরোত্তর প্রসার লাভ করছে। পৃথিবীর অন্য কোন দেশের তুলনায় মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গেই আমাদের বাণিজ্যিক লেনদেন ঘটে সবথেকে বেশি। জঙ্গিদের হাত থেকে আমাদের শহর ও নাগরিকদের রক্ষা করছে আমাদের সহযোগিতামূলক অংশীদারিত্ব। সাইবার হুমকির হাত থেকে আমাদের গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামোগুলিও সুরক্ষিত রয়েছে এই অংশীদারিত্বের সুবাদে। সিরি-র সূত্রে আমরা জেনেছি যে ভারতে যোগাভ্যাসের যে সুপ্রাচীন ঐতিহ্য রয়েছে, তা অনুসরণ করে চলেছে ৩ কোটি মার্কিন নাগরিক। এ দেশের নাগরিকরা যে আরও বেশি মাত্রায় যোগাভ্যাসের দিকে আকৃষ্ট হচ্ছেন একথাও আমাদের অজানা নয়। কিন্তু তা সত্ত্বেও স্পিকার মহোদয়, যোগাভ্যাসের ওপর আমরা কোনরকম মেধাস্বত্ত্বের অধিকার দাবি করিনি। এ দেশে যে ৩০ লক্ষ ভারতীয় বসবাস করেন তাঁরা গড়ে তুলেছেন দু’দেশের মধ্যে এক অপূর্ব সংযোগ-সেতু। তাঁরা কিন্তু আপনাদের শক্তি। তাঁরা আবার ভারতের গর্বও বটে। দুটি সমাজের যা কিছু সেরা ও শ্রেষ্ঠ তারই প্রতিফলন ঘটে এই ভারতীয়দের মধ্যে। জনজীবনে প্রবেশের অনেক আগেই আপনাদের এই দেশ সম্পর্কে আমি অবহিত। প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বভার গ্রহণের অনেক আগেই আমেরিকার ২৫টি রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে সফর করেছি আমি। তখনই আমি অনুভব ও উপলব্ধি করেছিলাম যে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মূল শক্তি হল এখানকার জনসাধারণের স্বপ্ন ও বলিষ্ঠ আশা-আকাঙ্ক্ষা। দেশের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষ পূর্তিতে, অর্থাৎ, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে এই কাজ সম্পূর্ণভাবে রূপায়িত হবে বলে আমি দৃঢ় বিশ্বাসী। ভারতের এই আগামীদিনের যাত্রাপথের প্রতিটি ক্ষেত্রে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে আমরা দেখতে চাই আমাদের এক অবিচ্ছেদ্য সঙ্গী হিসেবে। আপনাদের মধ্যে অনেকেরই বিশ্বাস, আমেরিকার কৌশলগত স্বার্থেই ভারতকে শক্তিশালী ও সমৃদ্ধ করে তোলার এই প্রচেষ্টা। কিন্তু আমার বক্তব্য আমাদের আদর্শ যেখানে এক, সেখানে বাস্তবের মাটিতে পারস্পরিক সহযোগিতা প্রসার না করার কোন কারণ থাকতে পারে না। আমাদের এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে দুটি দেশই যে লাভবান হবে বিশেষভাবে একথাও সত্য, সন্দেহাতীতভাবে। মার্কিন বাণিজ্য জগৎ যখন অর্থনৈতিক উন্নয়ন প্রচেষ্টার নতুন নতুন ক্ষেত্রের সন্ধান করে, তাদের উৎপাদিত পণ্যের বাজার সম্পর্কে অনুসন্ধান চালায়, দক্ষ সহায়সম্পদের প্রয়োজন অনুভব করে এবং উৎপাদন ও নির্মাণের জন্য উপযুক্ত স্থান চিহ্নিত করতে চায় তখন ভারত তাদের এক আদর্শ সহযোগী ও অংশীদার হয়ে উঠতে পারে। একবিংশ শতাব্দী আমাদের সামনে উপস্থিত করেছে অফুরন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনা। কিন্তু সেইসঙ্গে উপস্থিত বেশ কিছু চ্যালেঞ্জও। তাই, পরস্পর-নির্ভরশীলতা বৃদ্ধি পাচ্ছে উত্তরোত্তর। বিশ্বের কোন কোন দেশ যখন অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির পথে এগিয়ে চলেছে, অন্য প্রান্তের দেশগুলি তখন একে অপরের সঙ্গে সংঘর্ষের ঘটনায় লিপ্ত। এশিয়ায় একটি সর্বসম্মত নিরাপত্তা ব্যবস্থা গড়ে না ওঠায় অনিশ্চয়তা দেখা দিচ্ছে। বিংশ শতাব্দীর আন্তর্জাতিক সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলি এই নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার দায়িত্ব নেওয়ার পক্ষে যথেষ্ট শক্তিশালী নয়। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে এক বলিষ্ঠ অংশীদারিত্বের সম্পর্ক এশিয়া থেকে আফ্রিকা এবং ভারত মহাসাগর থেকে প্রশান্ত মহাসাগর পর্যন্ত ঐক্যবদ্ধ করতে পারে শান্তি, সমৃদ্ধি ও স্থিতিশীলতার সাধারণ প্রচেষ্টাগুলিকে। সমুদ্রপথগুলিতে বাণিজ্য ও পণ্য চলাচলের ক্ষেত্রে নিরাপত্তাও সুনিশ্চিত করে তুলতে পারে এই সম্মিলিত প্রচেষ্টা। আমাদের এই পারস্পরিক সহযোগিতার সম্পর্ক সফল হয়ে উঠতে পারে তখনই যখন বিংশ শতাব্দীর মানসিকতা নিয়ে গড়ে ওঠা আন্তর্জাতিক সংস্থা ও সংগঠনগুলি আজকের কঠিন বাস্তবতাকে স্বীকার করে নিয়ে এগিয়ে যেতে পারবে। আফগানিস্তানবাসীরা খুব স্বাভাবিকভাবেই স্বীকার করে নিয়েছেন যে আমেরিকার ত্যাগ ও উৎসর্গের মনোভাব এক উন্নততর জীবন সম্ভব করে তুলেছে তাঁদের দেশে। কিন্তু ঐ অঞ্চলকে নিরাপদ ও সুরক্ষিত রাখার লক্ষ্যে আপনাদের অবদান সেখানে প্রশংসিত হয়েছে গভীরভাবে। আফগানিস্তানের অধিবাসীদের সঙ্গে বন্ধুত্বের সম্পর্ককে অটুট রাখতে ভারতও প্রচুর ত্যাগ স্বীকার করেছে এবং ঐ দেশের জন্য অবদানের স্বাক্ষর আমাদেরও কম কিছু নয়। সুতরাং, আমাদের একটি সাধারণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হল এক সমৃদ্ধ, স্থিতিশীল ও শান্তিপূর্ণ রাষ্ট্র হিসেবে আফগানিস্তানের উত্থান ও পুনর্গঠন। এতকিছু সত্ত্বেও, মাননীয় সদস্যবৃন্দ আপনারা নিশ্চয়ই একমত হবেন যে শুধুমাত্র আফগানিস্তানেই নয়, দক্ষিণ এশিয়ার অন্যত্রও, এমনকি আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রেও আমাদের সবচেয়ে বেশি ভয় ও ভীতির কারণ হল সন্ত্রাস ও তার হুমকি। কিন্তু সন্ত্রাসবাদীদের দর্শন ও দৃষ্টিভঙ্গি কিন্তু এক ও অভিন্ন : হিংসা, ঘৃণা ও হত্যা। সন্ত্রাসের কালো ছায়া যদিও বিস্তার লাভ করছে বিশ্বের সর্বত্র, তবুও তার আঁতুরস্থল ভারতেরই প্রতিবেশী অঞ্চলে। সমস্ত পর্যায়েইএকজোট হতে হবে সন্ত্রাসের মোকাবিলার জন্য। কিন্তু গতানুগতিক পথে শুধুমাত্র সৈন্য, গোয়েন্দা তথ্য এবং কূটনীতি দিয়ে সন্ত্রাসবাদীদের রোখা সম্ভব নয়। সন্ত্রাসবাদের মোকাবিলায় আমরা হারিয়েছি বহু সামরিক ও অসামরিক ব্যক্তিকেই। তাই, এই মুহূর্তে আমাদের প্রয়োজন নিরাপত্তা সম্পর্কিত আমাদের সহযোগিতাকে সুদৃঢ় করে গড়ে তোলা। এই লক্ষ্যে আমাদের নীতির মূল লক্ষ্যগুলি হওয়া উচিত : সন্ত্রাস ও সন্ত্রাসবাদকে সম্পূর্ণভাবে বেআইনি তৎপরতা বলে ঘোষণা করতে হবে। আমাদের এই অংশীদারিত্বের সুফল শুধুমাত্র নির্দিষ্ট দুটি জাতি বা অঞ্চলের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না। রাষ্ট্রসঙ্ঘের শান্তিরক্ষী বাহিনীর মধ্যেও রয়েছে এক বিরাট সংখ্যক ভারতীয় সেনা। ক্ষুধা, দারিদ্র্য, নিরক্ষরতা এবং রোগ ও অসুখের মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন ব্যবস্থার মাধ্যমে ঐক্যবদ্ধভাবে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দিয়েছে ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। এশিয়া থেকে আফ্রিকা – সর্বত্রই শিক্ষা, নিরাপত্তা এবং উন্নয়নের প্রয়োজনে আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তুলেছে নতুন নতুন সুযোগ-সুবিধার বাতাবরণ। সমগ্র বিশ্বের প্রতি সুবিচারের লক্ষ্যে দু’দেশের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গির মূল কেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে পরিবেশ সুরক্ষার প্রতি দৃঢ় অঙ্গীকার। মাতা ধরিত্রীর সঙ্গে সম্প্রীতি রক্ষা হল ভারতের এক প্রাচীন ঐতিহ্যগত বিশ্বাস। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিকে সুলভ করে তুলতে এবং তার উৎপাদন উত্তরোত্তর বৃদ্ধি করার লক্ষ্যে নতুন নতুন উপায় অন্বেষণ আমাদের দুটি দেশের এক সাধারণ ঐক্যবদ্ধ প্রচেষ্টা। জি-২০, পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠক এবং জলবায়ু পরিবর্তন সম্পর্কিত শীর্ষ বৈঠকগুলিতেও এই সাধারণ লক্ষ্য ও প্রচেষ্টার কথা ঘোষণা করেছি আমরা। মাননীয় স্পিকার এবং বিশিষ্ট সদস্যবৃন্দ, আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্ক যত গভীরতর হয়ে উঠবে, আমাদের পরিস্থিতি ও পারিপার্শ্বিকতাও ক্রমশ বদলে যাবে। কিন্তু আমাদের উদ্বেগ ও স্বার্থ যখন এক ও অভিন্ন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে সিদ্ধান্ত গ্রহণের স্বাধীনতা এবং আমাদের পারিপার্শ্বিকতার বৈচিত্র্য আমাদের অংশীদারিত্বের মূল্যকেই আরও অমূল্য করে তুলবে। তাই, নতুন যাত্রাপথের সূচনায় এবং নতুন লক্ষ্যের অন্বেষণে আমাদের উচিত শুধুমাত্র গতানুগতিক বিষয়গুলি নিয়েই ব্যস্ত থাকা নয়, বরং, পরিবর্তন ও রূপান্তরমুখী চিন্তাভাবনাগুলিকে আশ্রয় করা। আমাদের চিন্তাভাবনার মধ্যে থাকা উচিত : পরিশেষে, আমি একথারই পুনরাবৃত্তি করতে চাই যে এক গুরুত্বপূর্ণ ভবিষ্যৎ সম্ভব করে তোলাই আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের মূল লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য। ওয়াল্ট হুইটম্যানের উদ্ধৃতি অনুসারে : “অর্কেস্ট্রার সমস্ত বাদ্যযন্ত্রে এখন ধ্বনিত হয়েছে সুর, সঙ্কেত ও নির্দেশও এসেছে অর্কেস্ট্রার পরিচালকের কাছ থেকে।” আমাকে এইভাবে সম্মানিত করার জন্য স্পিকার মহোদয় এবং বিশিষ্ট সদস্যবৃন্দকে আমি ধন্যবাদ জানাই। অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই আপনাদের সকলেই। অ্যাপেলের সিইও মিঃ টিম কুক শনিবার সাক্ষাৎ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। মিঃ কুক বিশেষভাবে উল্লেখ করেন মুম্বাইয়ে তাঁর সিদ্ধিবিনায়ক মন্দির পরিদর্শন এবং একটি ক্রিকেট ম্যাচ দেখার অভিজ্ঞতার কথা। ভারতে অ্যাপেল আইএনসি-র ভবিষ্যৎ কর্মপরিকল্পনার কথা প্রধানমন্ত্রীর সামনে তুলে ধরেন মিঃ টিম কুক। ভারতে নির্মাণ ও খুচরো ব্যবসার ক্ষেত্রে যে বিশাল সম্ভাবনা রয়েছে সে কথাও উল্লেখ করেন তিনি। ভারতের তরুণ প্রতিভার সপ্রশংস উল্লেখ করে মিঃ কুক বলেন, এই সমস্ত তরুণদের মধ্যে রয়েছে অভাবনীয় দক্ষতা যাকে কাজে লাগাতে আগ্রহী অ্যাপেল। এই লক্ষ্য পূরণে অ্যাপেলের সমর্থন ও সহযোগিতা প্রার্থনা করেন তিনি। সাইবার নিরাপত্তা এবং পরিসংখ্যানগত তথ্য বিনিময় সম্পর্কিত কয়েকটি বিষয়ও উঠে আসে দু’জনের আলোচনার মধ্যে। সাইবার অপরাধ চ্যালেঞ্জের মোকাবিলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কাছে সহযোগিতা প্রসারের জন্য মিঃ কুক-এর কাছে আর্জি জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। অসম ও রাজস্থানের বন্যায় যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের নিকটাত্মীয়কে এককালীন ২ লক্ষটাকা করে আর্থিক সহায়তার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দেশের সর্বোচ্চ নাগরিক সম্মান ‘ভারতরত্ন’ প্রাপকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। নানজি দেশমুখের অসামান্য সামাজিক অবদানের প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “গ্রামোন্নয়নে তাঁর বিশেষ অবদান আমাদের গ্রামগুলিতে বসবাসকারী মানুষের ক্ষমতায়নে এক নতুন দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। নিপীড়িত মানুষের প্রতি নম্রতা, করুণা ও সেবার মধ্য দিয়ে তাঁর ব্যক্তিত্বের পরিচয় প্রকাশিত হয়। তিনি প্রকৃতপক্ষেই একজন ভারতরত্ন।” “ভুপেন হাজারিকার গান ও সঙ্গীতে কয়েক প্রজন্মের মানুষ প্রভাবিত হয়েছেন। এঁদের কাছ থেকেই ন্যায়-বিচার, সম্প্রীতি ও সৌভ্রাতৃত্বের বার্তা ছড়িয়ে পড়েছে। ভারতীয় সঙ্গীতের ঐতিহ্যকে তিনি বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় করে তুলেছিলেন। ভারতরত্ন সম্মানে ভুপেনদা ভূষিত হওয়ায় আনন্দিত বোধ করছি।” প্রণব মুখোপাধ্যায় সম্পর্কে বলতে গিয়ে শ্রী মোদী বলেন, “প্রণব আমাদের সময়ের এক অসাধারণ কূটনীতিবিদ। তাঁর প্রজ্ঞা ও মেধার সমতুল হাতে গোনা কয়েকজন। “ মধ্যপ্রদেশের অমরকন্টকেনর্মদা সেবাযাত্রার সমাপ্তি উপলক্ষে আগামীকাল বিকেলে আয়োজিত এক কর্মসূচিতেঅংশগ্রহণের সুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। নর্মদার সুরক্ষায় নর্মদা সেবাযাত্রা হল এক বিশেষ জনআন্দোলন যাএকইসঙ্গে পরিবেশ সুরক্ষার বার্তা-ও বহন করে । আগামীকাল মধ্যপ্রদেশে নর্মদা সেবা মিশনের সূচনা করব আমি যার বিশেষ প্রভাবপড়বে মধ্যপ্রদেশের পরিবেশের ওপর-ও। কয়েকটি ট্যুইট বার্তায় তিনি বলেছেন যে, বৃহত্তরস্বার্থে সাময়িক অসুবিধা সত্ত্বেও দেশের নাগরিকরা ধৈর্য ও উৎসাহের সঙ্গে যেভাবেপরিস্থিতি সামাল দিতে সহযোগিতা করে চলেছেন, তাতে তিনি অভিভূত। দেশের সাধারণমানুষকে আশ্বাস দিয়ে শ্রী মোদী বলেছেন, ভারতকে দুর্নীতিমুক্ত করতে এবং উন্নয়নেরসুফল দেশের প্রত্যেক নাগরিকের কাছে পৌঁছে দিতে সরকার তার পথ থেকে বিচ্যুত হবে না। প্রধানমন্ত্রীবলেন, “নাগরিকরা ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষকে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে যেভাবে ধৈর্য ও শৃঙ্খলারসঙ্গে তাঁদের নোট বিনিময়ের কাজে সহযোগিতা করে চলেছেন, তাতে আমি আনন্দিত। জনসাধারণসক্রিয়ভাবে টাকা তোলা এবং নোট বিনিময়ের ব্যাপারে বরিষ্ঠ নাগরিকদের স্বেচ্ছায় ওসক্রিয়ভাবে সাহায্য করছেন জেনে আমি খুশি। অল্প কিছুদিনেরজন্য অসুবিধা ভোগ করতে হবে জেনেও বৃহত্তর স্বার্থে সকলে যেভাবে ধৈর্য ও উৎসাহেরসঙ্গে সহযোগিতা করছেন তা হৃদয়স্পর্শী। ডঃ শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকীতে তাঁর স্মৃতির উদ্দেশে শ্রদ্ধা নিবেদন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায়প্রধানমন্ত্রী বলেছেন : “ডঃ শ্যামা প্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের জন্মবার্ষিকীতে আমার সশ্রদ্ধ প্রণাম। মাননীয় প্রেসিডেন্ট হল্যান্ড ও প্রেসিডেন্ট ওবামা, মাননীয় মিঃ বিল গেট্‌স এবং অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গ, বৈঠকের এই সুন্দর উদ্যোগ আয়োজনের মধ্যেই প্রতিফলিত হয়েছে এই মহান জাতির চরিত্র। সমগ্র বিশ্ব আজ প্যারিসে সমবেত হয়েছে আমাদের গ্রহকে এক নির্দিষ্ট ও নিরন্তর লক্ষ্যে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সংকল্প নিয়ে। কার্বন নির্গমনের ফলে পৃথিবীর তাপমাত্রা যেভাবে বেড়ে চলেছে তার পরিপ্রেক্ষিতে আমাদের লক্ষ্য ও লক্ষ্যমাত্রার বিষয়ে অবশ্যই কথাবার্তা বলতে হবে। কিন্তু, একইসঙ্গে আমাদের স্থির করতে হবে কিভাবে এগোলে বিশ্বে স্বাভাবিক প্রাকৃতিক পরিবেশ সহজ ও অক্ষুন্ন থাকবে। সূর্যাস্তের পর বহু সংখ্যক দরিদ্র মানুষ অন্ধকারের মধ্যে বাস করেন। তাঁদের প্রয়োজন জ্বালানি শক্তি, যাতে তাঁরা তাঁদের গৃহকোণকে আলোকিত করে তুলতে পারেন এবং ভবিষ্যৎ-কেও করে তুলতে পারেন মজবুত ও শক্তিশালী। এই শিল্পায়নের যুগে জীবাশ্ম জ্বালানি ব্যবহারের পরিণতিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হন তাঁরাই। সুলভ জ্বালানি শক্তি এবং উন্নততর জীবনশৈলীর আকাঙ্খা সার্বজনীন। একইভাবে, দূষণমুক্ত পরিবেশ এবং স্বাস্থ্যসম্মত বাসস্থানের প্রয়োজনও রয়েছে সকলের। উন্নত দেশগুলির উচিৎ উন্নয়নশীল দেশগুলির বিকাশের পথ সুগম করে তোলা। আমাদের উন্নয়নের পথে কার্বন নির্গমন যাতে একটি বড় অন্তরায় না হয়ে দাঁড়ায় তা নিশ্চিত করতে হবে আমাদেরই। এই লক্ষ্যেই, আমাদের সকলের উচিৎ পারস্পরিক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার মাধ্যমে বিশুদ্ধ জ্বালানি উদ্ভাবনের চেষ্টা চালিয়ে যাওয়া, যাতে তা পৌঁছে দেওয়া যায় সকলের নাগালের মধ্যে। জলবায়ু পরিবর্তনের মোকাবিলায় এবং জলবায়ুর প্রতি ন্যায়-বিচার নিশ্চিত করতে উদ্ভাবনের বিষয়টি তাই খুবই জরুরি। আর এই কারণেই উদ্ভাবন সংক্রান্ত এই শীর্ষ বৈঠকটি খুবই গুরুত্বপূর্ণ। একটি সাধারণ উদ্দেশ্যকে কেন্দ্র করে আমরা সকলে এই লক্ষ্যেই মিলিত হয়েছি এখানে। চিরাচরিত ও প্রচলিত জ্বালানি শক্তিকে আমরা আরও বিশুদ্ধ জ্বালানিতে রূপান্তরিত করতে পারি। পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির নতুন নতুন উৎসও আমরা খুঁজে বের করতে পারি। আমাদের সকলের ভবিষ্যৎ-এর লক্ষ্যে এই দায়িত্ব নিতে হবে বিশ্বের সবকটি রাষ্ট্রকেই। আগামী ১০ বছরে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির লক্ষ্যে ৩০-৪০টি বিশ্ববিদ্যালয় ও গবেষণাগার নিয়ে আমাদের গড়ে তুলতে হবে এক আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্ক। উদ্ভাবিত জ্বালানি যাতে সকলের জন্য সুলভ করে তোলা যায় এবং তার ব্যবহারে সকলেই উৎসাহিত হন সেই চেষ্টাও চালিয়ে যেতে হবে আমাদের। আজ এখানে উপস্থিত অনেকগুলি দেশের সঙ্গেই সরকারি-বেসরকারি সফল অংশীদারিত্বের মডেল আমরা গড়ে তুলতে পেরেছি। ক্ষুদ্র দ্বীপ রাষ্ট্র সহ পৃথিবীর উন্নয়নশীল দেশগুলিতে পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানির উৎপাদনবৃদ্ধির কাজে ভারত সহযোগিতা করে আসছে। বিশুদ্ধ জ্বালানি প্রযুক্তি অন্বেষণের কাজ সাফল্যের সঙ্গেই এগিয়ে গেছে। সীমিত কার্বন নির্গমনের যুগে পৌঁছে যাওয়ার লক্ষ্যে এক নতুন অর্থনীতির সূচনা করতে পারি আমরা সকলেই। পরিবেশ ও অর্থনীতি এবং আমাদের উত্তরাধিকার ও দায়বদ্ধতার মধ্যে ভারসাম্য পুনরুদ্ধারের কাজ করতে হবে আমাদেরই। ক)গাড়ির চালক সহ অনধিক ১৩ জন যাত্রী সমেত মোটর যানের ক্ষেত্রে ৮৭০২১০, ৮৭০২২০,৮৭০২৩০ অথবা ৮৭০২৯০-এর আওতায় এবং খ)৮৭০৩-র আওতায় মোটর গাড়িগুলির ক্ষেত্রে। জিএসটিপরিষদের পক্ষ থেকে এ মাসে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে সর্বোচ্চ ক্ষতিপূরণ সম্পর্কিত এই সেসনির্দিষ্ট করার সুপারিশ পেশ করা হয়। “মহীয়সী নারী সাবিত্রীবাঈ ফুলের জন্ম জয়ন্তীতে প্রণাম জানাই। দরিদ্র এবংপ্রান্তিক সাধারণ মানুষের ক্ষমতায়নের লক্ষ্যে তিনি নিজেকে নিয়োজিত করেছিলেন। তিনিসর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়েছিলেন শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারের প্রতি। মঞ্চেউপবিষ্ট বিশিষ্টজন এবং সেনডাই কার্যসূচি ছাড়াও মানবজাতির ভবিষ্যৎনির্ধারণের লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে গৃহীত হয়েছে আরও দুটি বড় ধরনের কার্যসূচি : – নিরন্তর উন্নয়নেরলক্ষ্যমাত্রা, – এবং জলবায়ুপরিবর্তন সম্পর্কে প্যারিস চুক্তি। পরস্পরেরসঙ্গে সংযুক্তি হল এই আন্তর্জাতিক কর্মসূচিগুলির এক বিশেষ উল্লেখযোগ্য দিক। এগুলিরপ্রত্যেকটির সাফল্য নির্ভর করছে অন্য দুটি কর্মসূচির সাফল্যের ওপর। জলবায়ুপরিবর্তন সম্পর্কিত চুক্তি রূপায়ণ তথা নিরন্তর উন্নয়নের লক্ষ্যমাত্রা পূরণেরকেন্দ্রবিন্দুতে রয়েছে বিপর্যয়ের ঝুঁকি হ্রাস করার লক্ষ্যে গ্রহণযোগ্য কর্মসূচি । এই পরিস্থিতিতে আজকের এই সম্মেলন যথেষ্ট সময়োচিতএবং খুবই প্রাসঙ্গিক। গতদু’দশক ধরে সমগ্র বিশ্বে, বিশেষত আমাদের এই অঞ্চলে, ঘটে গেছে বহু পরিবর্তন যারঅধিকাংশই ছিল ইতিবাচক। নানা দিক দিয়েইএশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চল বর্তমানে রয়েছে এক নেতৃত্বদানের ভূমিকায়। গত ২০ বছরে এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে বিপর্যয়ের কারণে প্রাণহারিয়েছেন ৮ লক্ষ ৫০ হাজার মানুষ। বিপর্যয়ের কারণে মৃত্যুর ঘটনার শিকার হয়েছে যে প্রথমদশটি দেশ, তার মধ্যে সাতটিরই অবস্থান এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে। বিপর্যয়কবলিত মানুষের দুঃখ-দুর্দশাকে প্রত্যক্ষ করেছি আমি। ২০০১ সালে গুজরাট ভূমিকম্পেরসাক্ষী থেকেছি আমি এবং পরে ঐ রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী হিসেবে ভূকম্প পরবর্তীপুনরুদ্ধারের কাজে আমি অংশগ্রহণ করেছি রাজ্যবাসীর সঙ্গে। ক্ষতিগ্রস্ত মানুষেরদুর্দশার দৃশ্য ছিল খুবই বেদনাদায়ক। কিন্তু বিপর্যয়ের কবল থেকে বেরিয়ে আসারলক্ষ্যে তাঁদের সাহস, সঙ্কল্প ও চিন্তাভাবনা আমাকে অনুপ্রাণিত করেছিল। আমারঅভিজ্ঞতায় যত বেশি করে সাধারণ মানুষের নেতৃত্বে আমরা আস্থা স্থাপন করেছি, তত বেশিসুফল লাভ করেছি আমরা। শুধুমাত্র গৃহস্থ বাড়ির পুনর্নিমাণের কাজেই নয়, সমষ্টির জন্যনির্মাণের ক্ষেত্রেও আমি তা লক্ষ্য করেছি। নীতি প্রণয়ন এবং তা রূপায়ণের মধ্য দিয়ে এইধরনের উদ্যোগ ও নেতৃত্বকে সমর্থন যুগিয়ে যাওয়ার প্রয়োজন রয়েছে । আমরা,অর্থাৎ এশিয়াবাসীরা, দুর্যোগ ও বিপর্যয়ের কাছ থেকে অনেক কিছুই শিখেছি। ২০১৪ সালে ভারত মহাসাগরে সুনামির ঘটনার পর সবচেয়ে বেশিক্ষতিগ্রস্ত পাঁচটি দেশ বিপর্যয়ের ঝুঁকি মোকাবিলায় তৈরি করেছে নতুন কিছু আইন। আরমাত্র কয়েকদিনের মধ্যেই প্রথম ‘আন্তর্জাতিক সুনামি সচেতনতা দিবস’ পালন করতে চলেছিআমরা। সুনামির মতো ঘটনার আগাম সতর্কতা দেওয়ার ক্ষেত্রে আমরা যে যথেষ্ট মাত্রায়এগিয়ে গিয়েছি তারই এক বিশেষ উদযাপনের মুহূর্ত হল ঐ দিনটি। ২০০৪-এর ডিসেম্বরে ভারতমহাসাগরে সুনামি যখন আছরে পড়েছিল তখন আমরা ছিলাম অপ্রস্তুত, কোনরকম আগাম সতর্কতারব্যবস্থাও তখন ছিল না। কিন্তু বর্তমানে ভারত মহাসাগর অঞ্চলে সুনামির মতো ঘটনারজন্য আগাম সতর্কতা ব্যবস্থা চালু রয়েছে পূর্ণ মাত্রায়। মহাসাগর সম্পর্কিত তথ্যপরিষেবাদানের লক্ষ্যে ভারতের জাতীয় কেন্দ্রটি অস্ট্রেলিয়া এবং ইন্দোনেশিয়াকে সঙ্গেনিয়ে সুনামির মতো বিপর্যয় সম্পর্কে আঞ্চলিক বুলেটিন প্রচারের কাজে এখন যুক্তরয়েছে। ঘূর্ণিঝড়সম্পর্কে আগাম সতর্কতাদানের ক্ষেত্রেও এই অগ্রগতি সম্ভব হয়েছে। আমরা যদি ভারতে১৯৯৯ এবং ২০১৩-র ঘূর্ণিঝড়ের ক্ষয়ক্ষতি সম্পর্কে তুলনা করি, তাহলেই আমাদের অগ্রগতিকতখানি তা আমরা উপলব্ধি করতে পারব। অন্যান্য দেশেও এই ধরনের অগ্রগতি সম্ভব হয়েউঠেছে। উদাহরণস্বরূপ, ১৯৯১-এর ঘূর্ণিঝড়ের পর বাংলাদেশ সরকার ঘূর্ণিঝড় সম্পর্কেপ্রস্তুত থাকতে এক বড় ধরনের সমষ্টিভিত্তিক কর্মসূচি চালু করে। এর সুবাদে ঘূর্ণিঝড়েপ্রাণহানির ঘটনা অনেকটাই কমে এসেছে। তাই, এই ধরনের ব্যবস্থাকে এখন বিশ্বের শ্রেষ্ঠব্যবস্থা বলে স্বীকৃতি দেওয়া হয়েছে। আমিএতক্ষণ যা বললাম তা একটি সূচনামাত্র। আমাদের সামনে বড় বড় চ্যালেঞ্জ রয়েছে আরওঅনেক। এশিয়া-প্রশান্ত মহাসাগর অঞ্চলে নগরায়নের প্রসার ঘটছে। হয়তো আর এক দশকেরমধ্যেই গ্রামের তুলনায় বেশিরভাগ লোকের বসবাস শুরু হবে শহরগুলিতেই। তাই, পরিকল্পনা এবং তা রূপায়ণের মাধ্যমে এইঅগ্রগতির বিষয়টিকে যদি আমরা সঠিকভাবে পরিচালনা করতে না পারি, তাহলে বিপর্যয়েরকারণে অর্থনৈতিক ক্ষয়ক্ষতি এবং জীবনহানির আশঙ্কা আগের থেকেও আরও অনেক বেড়ে যাওয়ারআশঙ্কা রয়েছে । এইপরিস্থিতি ও প্রেক্ষাপটে বিপর্যয়ের ঝুঁকি এড়ানোর লক্ষ্যে আমাদের কর্মপ্রচেষ্টাকেনতুন উদ্যমে নিয়োজিত করতে দশ দফা কর্মসূচির একটি রূপরেখা আমি এখানেউপস্থাপিত করছি : প্রথমত, বিপর্যয়ের ঝুঁকিমোকাবিলার নীতি গৃহীত হওয়া উচিত উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রেই। আর মাত্র কয়েক দশকের মধ্যেই বিশ্বের নতুন নতুন পরিকাঠামোরঅধিকাংশই গড়ে উঠবে আমাদের এই অঞ্চলে। বিপর্যয়ের হাত থেকে রক্ষা করার জন্যসুনির্দিষ্ট মানে যাতে এই পরিকাঠামোগুলি গড়ে ওঠে তা আমাদের নিশ্চিত করতে হবে। এটিহল এক ‘স্মার্ট স্ট্র্যাটেজি’ যার সুফল মিলবে পরিশেষে। সরকারিব্যয়ের প্রতিটি ক্ষেত্রেই ঝুঁকির বিষয়টিকে মনে রাখতে হবে। ভারতে ‘সকলের জন্যবাসস্থান’ এবং ‘স্মার্ট নগরী’র মতো কর্মসূচিগুলিতে সুযোগ রয়েছে এই বিষয়টি নিশ্চিতকরার। এই অঞ্চলে বিপর্যয় নিরোধক পরিকাঠামো গড়ে তুলতে অন্যান্য অংশীদার দেশ এবংসংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে সঙ্গে নিয়েই ভারত গড়ে তুলবে এক সহযোগিতার বাতাবরণ। বিপর্যয়েরঝুঁকি ও তার মাত্রা নির্ণয়, বিপর্যয় প্রতিরোধী প্রযুক্তি এবং পরিকাঠামো লগ্নিরক্ষেত্রে ঝুঁকি হ্রাসের বিষয়গুলিকে যুক্ত করা প্রয়োজন। দ্বিতীয়ত, দরিদ্র মানুষেরবাসস্থান থেকে ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ এবং বহুজাতিক সংস্থা থেকে জাতি তথারাষ্ট্র – সকল ক্ষেত্রেই এবং সকলের জন্যই ঝুঁকির মোকাবিলায় ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থাকরা প্রয়োজন। বর্তমানে এই অঞ্চলের অধিকাংশ দেশেই বিমার সুযোগ রয়েছে শুধুমাত্রমধ্যবিত্ত এবং উচ্চ মধ্যবিত্ত মানুষদের জন্য। কিন্তু আমাদের চিন্তা করতে হবে এইকাজকে আরও প্রসারিত করার লক্ষ্যে। ‘জন ধন যোজনা’ কোটি কোটি মানুষকে যুক্ত করেছেব্যাঙ্ক ব্যবস্থার সঙ্গে। সুরক্ষা বিমা যোজনার আওতায় নিয়ে আসা হয়েছে আরও লক্ষ লক্ষমানুষকে যাঁদের জীবনে এই বিমার প্রয়োজন সবথেকে বেশি। কোটি কোটি কৃষকের কাছে ঝুঁকিরকারণে বিমার সুযোগ পৌঁছে দিতে আমরা চালু করেছি ‘ফসল বিমা যোজনা’। ব্যক্তি তথাগৃহস্থ মানুষের কাছে দুর্যোগ প্রতিরোধের সুযোগ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এ সমস্ত কিছুইহল আমাদের প্রাথমিক সূচনা মাত্র। অথচ তাঁদের রয়েছে অসামান্য মনোবল ওঅন্তর্দৃষ্টি। বিপর্যয়ের ফলে ক্ষতিগ্রস্ত মহিলাদের বিশেষ প্রয়োজন মেটানোর কাজেঅংশগ্রহণের জন্য আমাদের অবশ্যই প্রশিক্ষণ দিতে হবে আরও বেশি সংখ্যক নারীস্বেচ্ছাসেবীকে। চতুর্থত, ঝুঁকির মাত্রানির্ণয়ের জন্য বিনিয়োগের প্রয়োজন রয়েছে বিশ্বের সমস্ত দেশেই। ভূমিকম্পের মতোবিপর্যয়ের ঝুঁকি নির্ণয়ের লক্ষ্যে নির্দিষ্ট মান ও মাপকাঠির ব্যাপক প্রয়োগ করেছিআমরা এবং এর ওপরই ভিত্তি করে ভারতে আমরা চিহ্নিত করেছি ভূকম্প প্রবণ এলাকা ওঅঞ্চলগুলির। এর মধ্যে পাঁচটি অঞ্চল হল অতিমাত্রায় ভূকম্প প্রবণ এবং দুটি হলঅপেক্ষাকৃত কম ঝুঁকির এলাকা। রাসায়নিক বিপর্যয়, দাবানল, ঘূর্ণাবর্ত, বন্যা – এইধরনের বিপর্যয়ের ক্ষেত্রে আমাদের এমন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে হবে যাতে তা স্বীকৃত হয়বিশ্বের সর্বত্র। এর মধ্য দিয়ে বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তে বিপর্যয়ের প্রকৃতি এবংতার ভয়ঙ্করতা সম্পর্কে একটি সাধারণ ধারণা গড়ে তোলার কাজ আমরা নিশ্চিত করতে পারব। এই নেটওয়ার্কের অঙ্গ হিসেবে বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়বিপর্যয় সংক্রান্ত প্রাসঙ্গিক বিষয়গুলিতে বহুমুখী সমীক্ষা ও গবেষণা প্রচেষ্টাচালানোর সুযোগ পাবে। উপকূলবর্তী অঞ্চলে অবস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়গুলি উপকূল অঞ্চলেরবিপর্যয়ের ঝুঁকির মোকাবিলার ক্ষেত্রে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করতে পারবে।অন্যদিকে, পার্বত্য শহরগুলিতে অবস্থিত এই ধরনের বিশ্ববিদ্যালয়গুলি পাহাড়ি অঞ্চলের বিপর্যয়েরঝুঁকি মোকাবিলার কাজে সমীক্ষা ও গবেষণার সুযোগ নিতে পারবে। সপ্তমত, সোশ্যল মিডিয়া এবংমোবাইল প্রযুক্তির সুযোগ আমাদের পূর্ণ মাত্রায় গ্রহণ করতে হবে। বিপর্যয় মোকাবিলারক্ষেত্রে এক বিশেষ পরিবর্তন নিয়ে এসেছে সোশ্যল মিডিয়াগুলি। মোকাবিলার কাজে যুক্তবিভিন্ন সংস্থা এর ফলে দ্রুত যোগাযোগ করতে পারছে একে অপরের সঙ্গে এবং নাগরিকরাওখুব সহজেই একে অপরের সাহায্যে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগের সুযোগ লাভকরছেন। সোশ্যল মিডিয়ার সম্ভাবনাকে আমাদের অবশ্যই স্বীকার করতে হবে। একইসঙ্গেবিপর্যয়ের ঝুঁকি মোকাবিলায় বিভিন্ন অ্যাপ্লিকেশন্স-এর উদ্ভাবন ও প্রয়োগও একান্তজরুরি। অষ্টমত, স্থানীয় তথাআঞ্চলিক পর্যায়ে উদ্যোগ ও দক্ষতাকে আরও বাড়িয়ে তুলতে হবে। দ্রুত হারে বেড়ে ওঠাঅর্থনীতির দেশগুলিতে বিপর্যয় মোকাবিলার কাজ এত বিশাল যে দেশের সাধারণপ্রতিষ্ঠানগুলিকে ব্যবহার করা যায় পরিস্থিতিকে আরও সহজ করে তোলার কাজে । কিন্তু সুনির্দিষ্ট কাজ শুরু করতে হবে স্থানীয়পর্যায়েই। গত দু’দশক ধরে সমষ্টিভিত্তিক বিভিন্ন প্রচেষ্টা সীমাবদ্ধ থেকেছেশুধুমাত্র বিপর্যয় মোকাবিলার প্রস্তুতি এবং স্বল্পমেয়াদি আপৎকালীন পরিস্থিতিরপরিকল্পনা রচনার কাজে। এই ধরনের প্রচেষ্টা ঝুঁকিরমাত্রা কমিয়ে আনার পাশাপাশি স্থানীয় ও আঞ্চলিক বিকাশের সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে এবংস্থায়ী জীবিকা নির্বাহেরও ব্যবস্থা করতে পারে। এইভাবে স্থানীয় বা আঞ্চলিক পর্যায়েযদি বিপর্যয়ের ঝুঁকি এড়ানোর ব্যবস্থা গড়ে তোলা যায়, তাহলে এই ধরনের কাজে সচরাচরব্যবহৃত পদ্ধতি এবং এই দেশের প্রেক্ষাপটে অর্জিত জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে আমরা কাজেলাগাতে পারব। বিপর্যয়মোকাবিলার সঙ্গে যুক্ত সংস্থাগুলির উচিত জনসাধারণের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা ওপরামর্শক্রমে বিপর্যয় মোকাবিলার জরুরি ব্যবস্থাগুলি সম্পর্কে সচেতন করে তোলা । দৃষ্টান্তস্বরূপ, কোন দমকল যদি প্রতি সপ্তাহেএকটি করে স্কুলও বেছে নেয়, তাহলে হাজার হাজার ছেলেমেয়ে মাত্র এক বছরের মধ্যেইবিপর্যয় মোকাবিলার খুঁটিনাটি সম্পর্কে জ্ঞান অর্জন করতে পারে। কারণ, একই ধরনের বিপর্যয় কিন্তু আবার ঘটতে পারে। তাই, চাক্ষুষ কিছুশিক্ষা লাভেরও প্রয়োজন রয়েছে। বিপর্যয়ের ঘটনা, তার মাত্রা ও পরিধি, ত্রাণ ওপুনর্বাসন এবং পরবর্তীকালে পুনর্নিমাণ ও পুনরুদ্ধারের কাজ সম্পর্কে এক আন্তর্জাতিকতথ্যচিত্র প্রতিযোগিতার ব্যবস্থা করতে পারে রাষ্ট্রসঙ্ঘ। বিপর্যয়পরবর্তী পুনরুদ্ধারের কাজ ব্যবহারিক পরিকাঠামোর দিক থেকে শুধুমাত্র ‘যা ছিল তাকেফিরিয়ে আনা’র সুযোগ মাত্র নয়, বরং ঝুঁকির মোকাবিলা ও ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে তা আরওএক উন্নত প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা গড়ে তোলার সুযোগ ও সম্ভাবনা এনে দেয় আমাদেরসামনে। এই কারণে আমাদের কাজে লাগাতে হবে এমন কিছু ব্যবস্থাকে যা দ্রুত ঝুঁকিরবিষয়গুলি মোকাবিলা করতে পারে। বিপর্যয় পরবর্তীকালে ঘর-বাড়ি পুনর্নিমাণের কাজেসহায়তাদানের লক্ষ্যে ভারত তার অংশীদার দেশগুলির সঙ্গে তথা সংশ্লিষ্ট বহুপক্ষকেনিয়ে গড়ে ওঠা উন্নয়ন সংস্থাগুলির সঙ্গে প্রযুক্তিগত সহায়তা পদ্ধতি গড়ে তুলবে। এবং পরিশেষে, বিপর্যয় মোকাবিলায়আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতাকে আরও জোরদার করে তুলতে হবে। কোন বিপর্যয়ের পরেবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেয় বিভিন্ন রাষ্ট্র। যদি আমরাএকটি সাধারণ ছত্রছায়ায় মিলিত হয়ে যুক্তভাবে কাজ করতে পারি, তাহলে আমাদের এই সমবেতশক্তি ও সংহতিকে আরও শক্তিশালী করে তোলা প্রয়োজন। এই লক্ষ্যে একটি সাধারণ লোগো ওব্র্যান্ড গড়ে তুলতে পারে রাষ্ট্রসঙ্ঘ যার আওতায় আগ্রহী সকলেই ত্রাণ, পুনর্বাসন ওপুনর্নিমাণের কাজে একে অপরের সঙ্গে সহযোগিতার মাধ্যমে যুক্ত হতে পারে। বহিঃশত্রুরআক্রমণ থেকে দেশকে রক্ষা করে সশস্ত্র বাহিনী। কিন্তু বিপর্যয়ের মোকাবিলায় মানুষকেরক্ষা করার কাজে সঠিক শিক্ষার মাধ্যমে আমরা গড়ে তুলতে পারি আমাদের সমাজব্যবস্থাকে। বিপর্যয়প্রতিরোধে এই অঞ্চলের সবক’টি দেশের সঙ্গে একত্রে কাজ করতে আমরা প্রস্তুত। আমাদেরপ্রচেষ্টাকে আরও উৎসাহিত করে তুলবে আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক পর্যায়ের সহযোগিতা। গতবছর নভেম্বরে ভারত প্রথম দক্ষিণ এশীয় বার্ষিক বিপর্যয় মোকাবিলা সম্পর্কিতকার্যক্রমের আয়োজন করেছিল। আঞ্চলিক সহযোগিতার এই শক্তিই ভারতকে উৎসাহিত করছে খুবশীঘ্রই দক্ষিণ এশীয় উপগ্রহ উৎক্ষেপণের কাজে। বিপর্যয় মোকাবিলার উদ্দেশ্যে ভারত মহাকাশের ক্ষেত্রে তার ক্ষমতা ওদক্ষতা যে কোন দেশের সঙ্গেই ভাগ করে নিতে প্রস্তুত। সেনডাইকার্যসূচি রূপায়ণের সাথে সাথে আঞ্চলিক এবং আন্তর্জাতিক সহযোগিতার নতুন নতুনক্ষেত্রগুলিকেও আমরা স্বাগত জানাব। এই মউ-এর লক্ষ্যণীয় বৈশিষ্ট্য হচ্ছে: কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আজ খরা বা প্রাকৃতিক দুর্যোগে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামীণ এলাকার জব কার্ড ধারকদের জন্য মহাত্মা গান্ধী জাতীয় গ্রামীণ কর্মসংস্থান নিশ্চয়তা আইন অনুসারে বছরে ১০০ দিনের অতিরিক্ত হিসেবে চলতি অর্থবর্ষে আরও ৫০ দিনের অ-দক্ষ কায়িক পরিশ্রমের কাজের কর্ম-উত্তর অনুমোদন মঞ্জুর করেছে। এর ফলে, রাজ্যগুলির পক্ষে খরাগ্রস্থ এলাকায় গ্রামীণ দরিদ্র জনসাধারণকে অতিরিক্ত মজুরি সংক্রান্ত কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করতে পারবে। দরিদ্রতম গ্রামীণ পরিবারগুলি এ থেকে উপকৃত হবে কেননা, গ্রামীণ মরশুমি কর্মহীনতা ঘোচানো এবং দুর্দশা কমানোর জন্য এটি বিশেষ কার্যকর হবে। চলতি খরিফ মরশুমে বর্ষার ঘাটতির দরুন কৃষকদের আশু প্রতিকারসাধনে ভারত সরকার ইতিমধ্যেই বেশকিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এইসব ব্যবস্থা সম্বলিত নির্দেশ ইতিমধ্যেই বিভিন্ন রাজ্য সরকারের কাছে পাঠিয়ে দেওয়া হয়েছে যারা চাহিদার মূল্যায়নের ভিত্তিতে সেগুলি রূপায়ণ করবে। এ সম্পর্কে নেওয়া বিভিন্ন সিদ্ধান্তগুলি হল – ক্ষতিগ্রস্থ এলাকার কৃষকদের জন্য ডিজেলের ভর্তুকি যোগানোর প্রকল্প – খরাগ্রস্ত এলাকায় ডিজেলচালিত পাম্পসেটের সাহায্যে জীবনদায়ী সেচের কাজ চালিয়ে যেতে কৃষকদের ডিজেলে ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে জমির ফসল বাঁচাতে এবং এক্ষেত্রে ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। ডিজেলের মূল্যে ৫০ শতাংশ ভর্তুকি দেওয়ার সিদ্ধান্ত হয়েছে আর এর অর্থমূল্য হবে হেক্টরপ্রতি ২০০০ টাকা। তবে, একজন কৃষককে সর্বোচ্চ ২ হেক্টর পর্যন্ত জমির জন্য ভর্তুকি দেওয়া হবে আর সহায়তার অর্থ ভারত সরকার ও রাজ্য সরকারগুলির মধ্যে আধাআধি ভাগ হবে। এই ঊর্ধ্বসীমা বৃদ্ধি চলতি বছরের শেষদিন পর্যন্ত কার্যকর থাকবে। বর্ষণসেবিত উদ্যান শস্য বাঁচানোর জন্য ব্যবস্থা – বর্ষণসেবিত উদ্যান শস্যের পুনরুজ্জীবনে অর্থসাহায্য আরও ১৫০ কোটি টাকা বাড়ানো হয়েছে। এই প্রকল্পটি দেশের সবক’টি খরাপীড়িত জেলা/ব্লকে রূপায়িত হবে। খরাপীড়িত জেলা/ব্লকের এজন্য হেক্টরপিচু ৩,২০০ টাকার সহায়তা দেওয়া হবে মাথাপিছু ২ হেক্টর পর্যন্ত জমির জন্য। চলতি খরিফ মরশুমের জন্য বীজ ও অন্যান্য উপাদানের যোগান – চলতি খরিফ মরশুমের জন্য বীজ ও অন্যান্য উপাদান পাওয়ার বিষয়টি সাপ্তাহিক শস্য আবহাওয়া নজরদারি গোষ্ঠীর বৈঠকে পর্যালোচনা করা হয়। এক্ষেত্রে রাজ্যের তৈরি থাকার বিষয়টিও ভিডিও কনফারেন্সিং-এর মাধ্যমে সুনিশ্চিত করা হয়ে থাকে। এসএমএস-এর মাধ্যমে পরামর্শ – মন্ত্রক ‘এম-কিষাণ’ পোর্টালের মাধ্যমে নথিভুক্ত কৃষকদের এসএমএস-এর মাধ্যমে পরামর্শ যুগিয়ে থাকে। এর মধ্যে যেমন আবহাওয়াভিত্তিক পূর্বাভাস ইত্যাদি থাকে, ঠিক তেমনই থাকে চরম প্রতিকূল আবহাওয়ার ক্ষতিকারক প্রভাব কমানোর ব্যবস্থাও। এসডিআরএফ-এনডিআরএফ তহবিল – প্রাকৃতিক দুর্যোগের ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় ত্রাণের সংস্থান করার প্রাথমিক দায়িত্ব রাজ্য সরকারের। কেন্দ্র রাজ্য সরকারের প্রয়াসে পরিপূরক ভূমিকা নিয়ে থাকে আর্থিক সহায়তার মাধ্যমে। ত্রাণ ব্যবস্থার জন্য রাজ্য বিপর্যয় প্রতিকার তহবিলের (এসডিআরএফ) রূপে রাজ্য সরকারের কাছে অর্থ গচ্ছিত থাকে। এর অতিরিক্ত হিসেবে জাতীয় বিপর্যয় প্রতিকার তহবিল থেকে অর্থ দেওয়া হয় বিশেষ রকমের অত্যধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের জন্য। এবারে এসডিআরএফ-এর প্রথম কিস্তির টাকা ইতিমধ্যেই রাজ্য সরকারগুলিকে দিয়ে দেওয়া হয়েছে। সেখানে তিনি স্বাস্থ্য, শিক্ষা, জল সরবরাহ এবং পরিষ্কার – পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কিত একাধিক প্রকল্পের সূচনা করবেন। আশা করা হচ্ছে, এই প্রকল্পগুলির ফলে ঝাড়খন্ডের আদিবাসী মানুষজন ব্যাপক উপকৃত হবেন। হাজারিবাগ সফরে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী তিনটি মেডিকেল কলেজের উদ্বোধন করবেন। এই মেডিকেল কলেজগুলি হ’ল – হাজারিবাগ, দুমকা ও পালামৌ-তে গড়ে উঠেছে। এছাড়াও, তিনি হাজারিবাগ, দুমকা, পালামৌ এবং জামশেদপুরে ৫০০ শয্যাবিশিষ্ট চারটি হাসপাতালের শিলান্যাস করবেন। প্রধানমন্ত্রী গ্রামীণ জল সরবরাহের লক্ষ্যে রামগড় ও হাজারিবাগ জেলায় চারটি প্রকল্পের উদ্বোধন করবেন। এরপর, প্রধানমন্ত্রী সাহেবগঞ্জে বর্জ্য নিকাশি পরিচালন কেন্দ্রের সূচনা এবং নমামি গঙ্গে কর্মসূচির আওতায় মধুসূদন ঘাটের উদ্বোধন করবেন। রামগড়ে মহিলাদের উচ্চতর শিক্ষার জন্য যে ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজটি গড়ে তোলা হচ্ছে, শ্রী মোদী তারও উদ্বোধন করবেন। আর্থিক দিক থেকে পিছিয়ে পড়া ও বঞ্চিত শ্রেণীর মানুষের বাসস্থান এলাকাগুলির জন্য তিনি একাধিক জল সরবরাহ প্রকল্পেরও শিলান্যাস করবেন। হাজারিবাগের আচার্য বিনোবা ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আদিবাসী অধ্যয়ন কেন্দ্রেরও তিনি শিলান্যাস করবেন। ই-ন্যাম বা জাতীয় বৈদ্যুতিন কৃষি বাজার উদ্যোগের আওতায় কৃষকদেরকে মোবাইল ফোন কেনার জন্য প্রত্যক্ষ হস্তান্তর কর্মসূচির সূচনা উপলক্ষে নির্দিষ্ট কিছু সুফলভোগীর হাতে তিনি চেক তুলে দেবেন। সরকারি বিদ্যালয়গুলিতে ছাত্রছাত্রীদের মধ্যে দৈহিক পুষ্টির ঘাটতি মেটাতে প্যাকেটজাত গুড়ো দুধ প্রধানমন্ত্রী পড়ুয়াদের বিতরণ করবেন। এই পরিপ্রেক্ষিতে শ্রী শিয়ারও দু’দেশের মধ্যে মৈত্রীর সম্পর্ক আরও বাড়ানোর ওপর জোর দেন। গত বছর দেশের নানা জায়গায় অস্বাভাবিক আবহাওয়ার ফলে কৃষকরা ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছিলেন, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী উদ্বেগ প্রকাশ করেন। তিনি বলেন, আমাদের দায়িত্ব সঙ্কটের সময়ে কৃষকদের সাহায্য করা এবং সেজন্য সরকার দুর্দশাগ্রস্ত কৃষকদের ক্ষয়ক্ষতির মূল্যায়ন করতে কয়েকটি কেন্দ্রীয় দলকে পাঠিয়েছিলেন। তিনি জানান যে, কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলি এবং ব্যাঙ্ক ও বিমা সংস্থাগুলি কৃষকদের ত্রাণ দিতে যতটা সম্ভব চেষ্টা করবে। প্রধানমন্ত্রীর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণা হল, দুর্দশাগ্রস্ত কৃষকদের দেও উপকরণ ভর্তুকির অঙ্ক এখনকার পরিমাণের ৫০ শতাংশ বাড়ানো হবে। প্রধানমন্ত্রী নয়াদিল্লিতে ‘প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনার’ সূচনা অনুষ্ঠানের ফাঁকে এই গুরুত্বপূর্ণ ঘোষণাগুলি করেন। গুজরাটের ফেরিওয়ালা থেকে শুরু করে শপিংমল এবং কারিগর থেকে শুরু করে হোটেল-রেস্তোরাঁর সঙ্গে যুক্ত ব্যবসায়ীরা এই উৎসবে তাঁদের পণ্য বিক্রির সুযোগ পেলেন এই উৎসবে। এই প্রেক্ষিতে ভাইব্র্যান্ট গুজরাট এবং আমেদাবাদ শপিং ফেস্টিভ্যাল অবশ্যই প্রশংসনীয়। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দেশে বাণিজ্যের উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করার জন্য সরকার প্রতিনিয়ত কাজ করছে। বিগত চার বছরে পুরনো আইনগুলিকে বিলুপ্ত করা হয়েছে এবং এর পাশাপাশি, আইনের অসংখ্য ধারাকে সহজ করা হয়েছে। এই প্রচেষ্টা চালানোর ফলে সহজে ব্যবসা করার ক্ষেত্রে ভারত ১৪২ থেকে ৭৭ – এ চলে এসেছে। শ্রী মোদী বলেন, ছোট ছোট উদ্যোগপতিদের জন্য ব্যবসা-বাণিজ্য করার প্রণালী আরও সহজ করার প্রচেষ্টা অব্যাহত রেখেছে সরকার। এই সরকারই জিএসটি-র ভিত্তিতে ছোট ছোট উদ্যোগপতিদের ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ প্রদান ব্যবস্থাকে আরও সহজ করে তুলেছে। মাত্র ৫৯ মিনিটে ১ কোটি টাকা পর্যন্ত ঋণ মঞ্জুর করা হচ্ছে এখন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি সোমবার জম্মু ও কাশ্মীরের মূখ্যমন্ত্রী শ্রী মুফতি মহম্মদ সঈদের সাথে কথা বলেন এবং ভূমিকম্পের ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি সম্পর্কে সমস্ত খবর নেন| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১২৪তম সংবিধান সংশোধনী বিল, ২০১৯ রাজ্যসভায় পাশ হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “রাজ্যসভায় ১২৪তম সংবিধান সংশোধনী বিল পাশ হওয়ায় আমি অত্যন্ত আনন্দিত। এই বিলের প্রতি বিপুল সমর্থন দেখে আনন্দিত হয়েছি। সংসদের এই কক্ষে বিলটি নিয়ে তীব্র তর্ক-বিতর্কে বহু সদস্য নিজেদের দূরদৃষ্টিসম্পন্ন মতামত প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী গত দু’বছর যাবৎ ভারত ওচীনের মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের নিবিড় সফর বিনিময়ের প্রক্রিয়াকে স্বাগত জানান এবং তিনিবলেন এর মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে পারস্পরিক কৌশলগত বোঝাপড়া গড়ে উঠতে সহায়ক হবে। এইউপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী গত বছর মে মাসে তাঁর সফল চীন সফরের প্রসঙ্গ অবতারণা করেন।সেই সঙ্গে চলতি বছরের সেপ্টেম্বর মাসে জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনে যোগদানের জন্য তাঁরহাঙঝাও সফরের কথাও মনে করিয়েছেন। উভয় দেশের নেতৃত্বই পারস্পরিক স্বার্থসংশ্লিষ্টবিষয়, বিশেষ করে দ্বিপাক্ষিক সন্ত্রাস প্রতিরোধে সহযোগিতার বিষয়সমূহ নিয়ে আলোচনাকরেন। সেদিনআমি সমস্ত দলকেই ধন্যবাদ জানিয়েছিলাম। বৃহত্তরজাতীয় স্বার্থে যখন সবক’টি দল একযোগে কাজ করে তখনই ইতিবাচক ফল ও প্রভাব লক্ষ্য করাযায়। জনসাধারণেরচাহিদা ও আশা-আকাঙ্ক্ষার বিষয়গুলি নিয়েই আমরা আলোচনায় ব্যস্ত থাকব। এছাড়াও,এ সমস্ত কিছুর মধ্যে সরকারের নিজস্ব চিন্তাভাবনারও প্রতিফলন ঘটবে। সবক’টিরাজনৈতিক দলের ভালোরকম অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে এক সুস্থ ও সুন্দর বিতর্ক তথাআলাপ-আলোচনার পরিবেশ গড়ে উঠবে বলে আমি আশা করি। সরকারেরপক্ষ থেকে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করব সবক’টি রাজনৈতিক দলের আলোচনা ও কাজকর্মেরমধ্যে সমন্বয় গড়ে তোলার। পণ্যও পরিষেবা কর সম্পর্কে আরও এগিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে রাজ্য সরকার ও রাজনৈতিক দলগুলিরসঙ্গে আমরা আলোচনা করেছি। এই অধিবেশনের আগেও পরামর্শ ও মতবিনিময় প্রক্রিয়াঅনুষ্ঠিত হয়েছে বেশ ভালোভাবেই। বিশ্বেরখাদ্য প্রক্রিয়াকরণ ক্ষেত্রেরপথ প্রদর্শক এবং সিদ্ধান্ত গ্রহণকারী নেতৃবৃন্দের এইবিশেষ সমাবেশে অংশগ্রহণ করতে পেরে আমি আনন্দিত। ভারতের বিশ্ব খাদ্য সম্মেলন,২০১৭-তে আপনাদের সকলকে স্বাগত জানাই। আজকের এইআয়োজন থেকে আপনারা এক ঝলক দেখে নিতে পারবেন যে কোন কোন সুযোগ-সুবিধা ভারতে অপেক্ষাকরে রয়েছে আপনাদের জন্য। আমাদের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের মূল্যমান শৃঙ্খলটিরসম্ভাবনাকে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে এই সম্মেলনে। সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন পক্ষেরমধ্যে সংযোগ ও যোগাযোগ স্থাপনের এই বিশেষ মঞ্চটি পারস্পরিক সমৃদ্ধির লক্ষ্যেসহযোগিতার প্রসার ঘটাবে বলে আমি মনে করি। সেইসঙ্গে, আপনাদের সামনে উপস্থাপিত হবেবেশ কিছু মুখরোচক ও সুস্বাদু খাদ্য সম্ভার।সমগ্র বিশ্বই আমাদের এই স্বাদকেমনে-প্রাণে গ্রহণ করে নিয়েছে। কৃষিক্ষেত্রেভারতের শক্তি রয়েছে নানাদিক থেকেই, যা বিশেষ বৈচিত্র্যপূর্ণও বটে। চাল, গম, মাছ, ফলমূল এবং শাক-সবজি উৎপাদনের ক্ষেত্রে বিশ্বে আমাদেরস্থান এখন দ্বিতীয়। শুধু তাই নয়, বিশ্বের বৃহত্তম দুধ উৎপাদনকারী দেশ হল ভারত। গত১০ বছর ধরে আমাদের বাগিচা ক্ষেত্রের প্রসার ঘটেছে বার্ষিক ৫.৫ শতাংশ হারে। ইউরোপ এবং দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ায় আমাদেরমশলা-বাণিজ্যের সুনাম কারোরই আজ অজানা নয়। এমনকি, ভারতীয় মশলার আকর্ষণেক্রিস্টোফার কলম্বাস পৌঁছে গিয়েছিলেন আমেরিকায় ভারতে পৌঁছনোর এক বিকল্প সমুদ্রপথেরঅন্বেষণে। খাদ্যপ্রক্রিয়াকরণকে ভারতের এক ধরনের জীবনধারা বলা চলে। যুগ যুগ ধরে এর চর্চা হয়ে আসছেএমনকি, সাধারণ গৃহস্থ পরিবারেও। খুবই সাধারণভাবে ঘরে উৎসেচন প্রক্রিয়ার মাধ্যমেআমাদের বিখ্যাত আচার, চাটনি, পাঁপড় ও মোরোব্বার মতো খাবার জন্ম নিয়েছে যা বিশ্বেরঅভিজাত থেকে সাধারণ পরিবার – সকলের কাছেই সমান সমাদর লাভ করেছে। আসুন, এখনএকটু দৃষ্টি ফেরানো যাক আরও বড় ধরনের এক বাস্তব চিত্রের দিকে। ভারতবর্তমানে দ্রুততম গতিতে বিকাশশীল এক বিশ্ব অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। পণ্য ও পরিষেবা করঅর্থাৎ, জিএসটি বহুবিধ কর ব্যবস্থার বিলোপ ঘটিয়েছে। গ্রিনফিল্ডবিনিয়োগের ক্ষেত্রে ২০১৬-তে ভারতের অবস্থান ছিলশীর্ষে। আন্তর্জাতিক উদ্ভাবন সূচক,বিশ্বের সার্বিক উন্নয়ন সূচক এবং আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতামুখিনতা সূচকের নিরিখেওভারতের অগ্রগতি এখন বেশ দ্রুততর। ভারতে নতুনব্যবসা-বাণিজ্যের সূচনা এখন আগের থেকে অনেক বেশি সহজ হয়ে গেছে। বিভিন্ন সংস্থারকাছ থেকে অনুমতি ও ছাড়পত্র লাভের প্রক্রিয়াও এখন অনেক সরল করে তোলা হয়েছে। প্রাচীনঅপ্রচলিত আইনগুলি বাতিল ঘোষণা করে বাধ্যবাধকতার বোঝাও অনেকটাই হালকা করে নিয়ে আসাহয়েছে। এবার,শুধুমাত্র খাদ্য প্রক্রিয়াকরণের দিকেই একবার তাকানো যাক। পরিবর্তন বারূপান্তর সম্ভব করে তোলার লক্ষ্যে বেশ কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে আমাদের সরকার। এইবিশেষ ক্ষেত্রটিতে বিনিয়োগের জন্য সবচেয়ে পছন্দের স্থান হিসেবে চিহ্নিত হয়েছেভারত। বিদেশিবিনিয়োগ কর্তাদের কাছে সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে চালু হয়েছে ‘এক জানালা’নীতি। কেন্দ্র এবং রাজ্য সরকারগুলির পক্ষ থেকে আকর্ষণীয় অর্থনৈতিক সুযোগ-সুবিধারওপ্রসার ঘটানো হয়েছে। স্থানীয় বাআঞ্চলিক পর্যায়ে সহায়সম্পদের খোঁজখবর ছাড়াও প্রক্রিয়াকরণের চাহিদা বা প্রয়োজনসম্পর্কিত সমস্তরকম তথ্যই সেখানে সন্নিবেশিত রয়েছে। কৃষি, খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ,ব্যবসা-বাণিজ্য এবং সার্বিকভাবে সুযোগ-সুবিধার প্রসারের সঙ্গে যাঁরা যুক্ত রয়েছেন,তাঁদের সকলের জন্যই এটি হল এক বিশেষ মঞ্চ। মূল্যমানশৃঙ্খলের বহু ক্ষেত্রেই এখন বেসরকারি অংশগ্রহণ উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। তবেঠিকা চাষ, কাঁচামালের উৎস এবং কৃষি সম্পর্কিত সুযোগ-সুবিধার জন্য আরও বেশিবিনিয়োগের এখন প্রয়োজন রয়েছে। ঠিকা চাষের ক্ষেত্রে ভারতে বহু আন্তর্জাতিক সংস্থাই এখনএগিয়ে এসেছে। ভারতকে একটি বেশ বড় ধরনের আউটসোর্সিং কেন্দ্র হিসেবে যদি বেছে নেওয়াহয়, তাহলে নিঃসন্দেহে আন্তর্জাতিক বড় বড় বাজারগুলির ক্ষেত্রে এ হল সুস্পষ্টভাবেইএক বিশেষ সুযোগ। মাঠ থেকেফসল তোলার পরবর্তী পর্যায়ে প্রাথমিক প্রক্রিয়াকরণ, মজুত, সংরক্ষণ পরিকাঠামো, হিমঘরএবং রেফ্রিজারেটর ব্যবস্থায় তা পরিবহণের মতো সুযোগ-সুবিধার যেমন প্রসার ঘটানোহয়েছে, অন্যদিকে তেমনই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ এবং তার মূল্যমান সংযোজনের ক্ষেত্রেওসৃষ্টি হয়েছে প্রচুর সুযোগ-সম্ভাবনার। বিশেষত, জৈব এবং বিশেষ পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্যসামগ্রীরক্ষেত্রে মূল্যমান সংযোজনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। নগরায়ন এবংমধ্যবিত্ত শ্রেণীর ক্রমপ্রসারের ফলে পুষ্টিগুণ সম্পন্ন খাদ্যশস্য এবংপ্রক্রিয়াকরণজাত খাদ্যসামগ্রীর চাহিদা উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেয়ে চলেছে। একটিপরিসংখ্যান এখানে আমি আপনাদের সামনে তুলে ধরতে আগ্রহী। প্রত্যেক দিনই ভারতেরট্রেনগুলিতে ১০ লক্ষেরও বেশি যাত্রীর কাছে খাবার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছে। তাঁরাসকলেই খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের সম্ভাবনাময় ক্রেতা। তাই এই ধরনের বিশাল সুযোগএখন অপেক্ষা করে রয়েছে আপনাদের সকলের জন্য। জীবনধারা বাজীবনশৈলীর সঙ্গে সম্পর্কিত বিভিন্ন রোগ ও অসুখ বৃদ্ধি পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেগ্রহণযোগ্য এবং গ্রহণীয় খাদ্যসামগ্রীর প্রকৃতি ও গুণমান সম্পর্কে জনসচেতনতারপ্রসার ঘটেছে বিশ্ব জুড়ে। তাই কৃত্রিম রং, রাসায়নিক এবং খাদ্য সংরক্ষণের জন্যব্যবহৃত কৃত্রিম পণ্য ব্যবহারের থেকে মানুষ এখন মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন। স্বাস্থ্যসম্মত,পুষ্টিকর এবং সুস্বাদু খাদ্যসামগ্রী এখন প্রস্তুত করা যেতে পারে আমাদের দেশে যাশুধুমাত্র প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থা গড়ে তুলতেই সাহায্য করবে না,অপেক্ষাকৃত অনেক কম খরচে তা এখানে উৎপাদন ও প্রক্রিয়াকরণ করা সম্ভব। ভারতেরখাদ্য নিরাপত্তা এবং উন্নত গুণমান বজায় রাখার জন্য যে প্রতিষ্ঠানটি রয়েছে তা ভারতেপ্রস্তুত খাদ্যসামগ্রী যাতে আন্তর্জাতিক মানের সমকক্ষ হয়ে উঠতে পারে তা নিশ্চিতকরার কাজে সচেষ্ট রয়েছে। কোডেক্স-এর সঙ্গে খাদ্যে মূল্য ও গুণমান সংযোজনেরব্যবস্থা এবং সেইসঙ্গে তা পরীক্ষা করে দেখার জন্য শক্তিশালী গবেষণা সংক্রান্তপরিকাঠামো গড়ে তোলার মাধ্যমে খাদ্যশিল্প ও বাণিজ্যের এক অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলাসম্ভব। তাই তাঁদের আয় ও উপার্জনকেআগামী পাঁচ বছরে দ্বিগুণ করে তোলার এক লক্ষ্যমাত্রা আমরা স্থির করেছি। সম্প্রতিআমরা ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্পদ যোজনা’ নামে জাতীয় পর্যায়ে এক কর্মসূচির সূচনাকরেছি যার আওতায় বিশ্বমানের খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ পরিকাঠামো সৃষ্টি করা সম্ভব। এই ফুড পার্কগুলির মাধ্যমে কৃষি প্রক্রিয়াকরণ শিল্পগুচ্ছগুলিকে আমরা মূলউৎপাদন কেন্দ্রগুলির সঙ্গে যুক্ত করার লক্ষ্য স্থির করেছি। এর ফলে, আলু, আনারস,কমলা লেবু এবং আপেলের মতো ফল ও শস্য উৎপাদনে মূল্য সংযোজনের সম্ভাবনা রয়েছেপ্রচুর। এই ধরনের ৯টি পার্ক ইতিমধ্যেই চালু হয়ে গেছে এবং আরও ৩০টি পার্ক সারাদেশে গড়ে উঠতে চলেছে। দেশের সুদূরতমপ্রান্তে এই সমস্ত খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দিতে ডিজিটাল প্রযুক্তির প্রসারের মাধ্যমেসমগ্র পরিচালন ব্যবস্থাকেও আমরা উন্নত করে তুলছি। ভারতেরখাদ্যশিল্পের অন্তর্গত প্রতিটি ক্ষেত্রই এখন অফুরন্ত সুযোগ-সুবিধার দ্বার উন্মুক্তকরেছে। কয়েকটি দৃষ্টান্ত আমি এখানে তুলে ধরতে ইচ্ছুক। গ্রামীণঅর্থনীতিতে দুগ্ধোৎপাদন শিল্প এক গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র হয়ে উঠেছে। দুধকে সম্বল করেআরও নানারকম খাদ্যসম্ভার উৎপাদনের মাধ্যমে এই ক্ষেত্রটির সার্বিক উৎপাদনকে আমরাএখন বহুগুণে বাড়িয়ে তুলতে আগ্রহী। মধু হলমানবজাতির প্রতি প্রকৃতির এক অনন্য উপহার। মধুউৎপাদন ও রপ্তানির দিক থেকে আমরা বর্তমানে রয়েছি ষষ্ঠ অবস্থানে। এক ‘মিষ্টিবিপ্লব’-এর জন্য ভারত এখন সর্বতোভাবে প্রস্তুত। বিশ্বে মোটমাছ উৎপাদনের ৬ শতাংশ স্থান অধিকার করে রয়েছে ভারত। চিংড়ি ও কাঁকড়া রপ্তানিরক্ষেত্রে আমরা হলাম বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম একটি দেশ। বিশ্বের প্রায় ৯৫টি দেশেভারত থেকে মাছ ও মাছ চাষের খুঁটিনাটি কৃৎকৌশল রপ্তানি করা হয়। নীল বিপ্লবেরমাধ্যমে সমুদ্র অর্থনীতিতেও এক বিশেষ অগ্রগতির লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে চলেছি। উত্তর-পূর্ব ভারতে সিকিম হল ভারতের প্রথম সম্পূর্ণভাবে জৈব কৃষিপদ্ধতি অনুসরণকারী একটি রাজ্য। জৈব পদ্ধতিতে পণ্য উৎপাদনের জন্য ব্যবহারিকপরিকাঠামো গড়ে তোলার সুযোগ-সুবিধা নিয়ে অপেক্ষা করে রয়েছে সমগ্র উত্তর-পূর্ব ভারত। ভারতেরবাজারগুলিতে সফলভাবে ব্যবসা-বাণিজ্যের কাজ চালিয়ে যাওয়ার জন্য ভারতীয়দের রুচি ওখাদ্যাভ্যাসকে জানার ও বোঝার চেষ্টা করা একান্ত জরুরি। যেমন একটি উদাহরণ দিয়ে আমিআপনাদের বলতে পারি, দুগ্ধজাত খাদ্যসামগ্রী এবং ফলের রস ভারতের প্রিয়খাদ্যাভ্যাসগুলির অন্তর্গত। এই কারণেই নরম পানীয় উৎপাদকদের কাছে আমি আবেদনজানিয়েছি যে তাদের উৎপাদিত পানীয়ের মধ্যে যেন অন্তত ৫ শতাংশ ফলের রসের মিশ্রণথাকে। খাদ্যনিরাপত্তার সমাধানের পথ নিহিত রয়েছে খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্পের মধ্যেও। যেমন,আমাদের মোটা দানাশস্য এবং বজরায় রয়েছে বেশ উচ্চ পুষ্টিমূল্য। শুধু তাই নয়, প্রতিকূলকৃষি জলবায়ু পরিস্থিতিতেও এগুলির উৎপাদন সম্ভব। তাই এই সমস্ত পণ্যকে ‘জলবায়ুউপযোগী পুষ্টিগুণ সমৃদ্ধ শস্য’ বলে আমরা গণ্য করতে পারি। এর ওপর ভিত্তি করে আমরাকি আমাদের উদ্যোগকে আরও বাড়িয়ে তুলতে পারি না? আমাদের এই প্রচেষ্টার ফলে একদিকেদরিদ্রতম কৃষক সাধারণের আয় ও উপার্জন বৃদ্ধি যেমন সম্ভব, অন্যদিকে তেমনই খাদ্যেরপুষ্টিগুণের মাত্রাও তাতে আরও উন্নত করে তোলা যায়। এই সমস্ত উৎপাদন নিঃসন্দেহেসারা বিশ্বেই সমাদৃত হবে। বিশ্বেরচাহিদার সঙ্গে আমাদের এই সুযোগ ও সম্ভাবনাকে কি আমরা যুক্ত করতে পারি না? ভারতীয়ঐতিহ্যকে কিআমরা যুক্ত করতে পারি না মানবজাতির ভবিষ্যতের সঙ্গে? বিশ্ব বাজারেরসঙ্গে আমরা কি যুক্ত করতে পারি না ভারতের কৃষক সাধারণকে? এ সমস্ত প্রশ্নই আমি তুলেধরতে চাই আপনাদের সামনে। এই লক্ষ্যেভারতের বিশ্ব খাদ্য সম্মেলনে যে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ গ্রহণের প্রস্তাব গ্রহণ করাহবে সেই বিশ্বাস আমার রয়েছে। কারণ এখানেরয়েছে কৃষি থেকে খাবার টেবিল পর্যন্ত অফুরন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনা। এখানেইরয়েছে খাদ্য উৎপাদন, প্রক্রিয়াকরণ এবং তাতে সমৃদ্ধি লাভের সুযোগ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী দমন ও দিউ-তে শুক্রবার১ হাজার কোটি টাকা মূল্যের নানা উন্নয়নমূলক প্রকল্পের সূচনা করেন। এই উপলক্ষে তিনিসেখানে বিভিন্ন কর্মসূচির সুবিধাভোগীদের মধ্যে শংসাপত্রেরও বন্টন করেন এবং দমনকলেজ মাঠে একটি জনসমাবেশে ভাষণ দেন। প্রধানমন্ত্রী এই জনসমাবেশকে এক ঐতিহাসিক ঘটনা বলে আখ্যাদিয়ে বলেন, শুধু জনসংখ্যার দিক থেকেই নয়, সেখান থেকে চালু করা উন্নয়নমূলকপ্রকল্পগুলির জন্যও এ এক ঐতিহাসিক সমাবেশ। দমনকে প্রকাশ্যে মলত্যাগ মুক্ত ঘোষণা করার জন্য তিনি সেখানকারজনসাধারণ ও স্থানীয় প্রশাসনকে ধন্যাবাদ দেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, দমনে ই-রিক্‌শাএবং সিএনজি ব্যবহারের মাধ্যমে যেভাবে পরিচ্ছন্নতাকে গনআন্দোলনের রূপ দেওয়া হয়েছে,তা আমাদের কাছে এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। প্রধানমন্ত্রী এ প্রসঙ্গে বলেন, সরকার মৎস্যজীবীদেরকল্যাণে নানা ধরণের পদক্ষেপ নিচ্ছে এবং তাঁদের জীবনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনার জন্যনীল বিপ্লব সফল করতে তিনি বিশেষ গুরুত্ব দিচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী উড়ান প্রকল্পে আমেদাবাদ ও দিউ-এর মধ্যেসংযোগকারী এয়ার ওড়িশার উড়ানটির উদ্বোধন করেন। এই সঙ্গে তিনি ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমেদমন থেকে দিউ পবন হংস হেলিকপ্টার পরিষেবারও সূচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী ‘বেটি বাঁচাও, বেটি পড়াও’ প্রকল্পে একটিনবজাত কন্যাকে প্রশংসাসূচক উপহার তুলে দেন। দমন ও দিউ প্রশাসন মহিলাদের বিনামূল্যেযে গাড়িচালনা প্রশিক্ষণ দিয়েছে, তার শংসাপত্রও তিনি প্রাপকদের হাতে তুলে দেন আরসেইসঙ্গে স্কুলের ছাত্রীদের সাইকেল প্রদান করেন। প্রধানমন্ত্রী সিএনজি চালিতযানগুলির পারমিট-ও বন্টন করেন। আমার তরুণ বন্ধু দীপক লাথেরপুরুষদের ৬৯ কিলোগ্রাম ভারোত্তোলন পর্যায়ে ব্রোঞ্জ পদক জয় করেছেন। এই সিদ্ধান্তের ফলে, বিচার বিভাগীয় পরিষেবায় সমতা আসবে। পাতা ঝরার শেষে গাছে নবপত্রেরসঞ্চার হয়। বাগ-বাগিচায় সবুজের সমারোহ দেখা যায়। পাখির কলকাকলি মনেখুশির জোয়ার আনে। শুধু ফুলই নয়, গাছের শাখায় ফলও উজ্জ্বল হয়ে ওঠে রৌদ্রকিরণে। গ্রীষ্মঋতুর ফল আমের মুকুলও দেখা যায় এই বসন্তে। একইভাবে চাষের ক্ষেতে সর্ষের হলুদ ফুলদেখে আশায় বুক বাঁধে চাষি। পলাশের লাল ফুল হোলির আগমনের সঙ্কেত দেয়। আমীর খসরু ঋতুপরিবর্তনের এই সময়টার বড় সুন্দর বর্ণনা দিয়েছেন। তিনি লিখেছেনঃ যখন প্রকৃতিতে খুশির রঙ, যখনঋতুর রূপে উৎফুল্লতার ছোঁয়া, তখন মানুষও সেই আনন্দ উপভোগ করে। বসন্ত-পঞ্চমী,মহাশিবরাত্রি এবং হোলি উৎসব মানুষের জীবনকে রঙিন করে তোলে। প্রেম, ভ্রাতৃত্ব আরমানবতায় পূর্ণ এক পরিবেশে আমরা শেষ মাস ফাল্গুনকে বিদায় দিয়ে নতুন মাস চৈত্রকে বরণকরার জন্য প্রস্তুত হয়ে আছি। আমি সবার আগে দেশের লক্ষ লক্ষ নাগরিককে এই জন্য ধন্যবাদ দিতে চাই যে ‘ মন কী বাত ’ -এর আগে যখন আমি আপনাদেরমতামত চাই তখন তা প্রচুর সংখ্যায় এসে জমা হয়। শোভা জালান আমাকে ‘নরেন্দ্রমোদী’ অ্যাপে জানিয়েছেন যে অনেক মানুষ ইসরোরসাফল্যের ব্যাপারে অবহিত নয়। আর তাই তিনি বলেছেন যে আমি যেন ১০৪টি উপগ্রহেরউৎক্ষেপণ এবং ইন্টারসেপ্টর মিসাইল নিয়ে কিছু বলি। শোভাজী আপনাকে অনেক অনেক ধন্যবাদযে আপনি ভারতের গর্বের নিদর্শনকে স্মরণ করেছেন। দারিদ্র্যের সঙ্গে লড়াই হোক,অসুখবিসুখের হাত থেকে নিজেদের রক্ষা করা হোক, দুনিয়ার সঙ্গে সংযোগ স্থাপন হোক,জ্ঞান বা তথ্যের প্রেরণ হোক – প্রযুক্তি এবং বিজ্ঞান নিজের ভূমিকা প্রমাণ করেছে। ২০১৭ সালের ১৫ই ফেব্রুয়ারিভারতের জাতীয় জীবনে এক গৌরবময় দিন। বিশ্বের সমক্ষে আমাদের মাথা উঁচু করে দিয়েছেনআমাদের বিজ্ঞানীরা। আর আমরা জানি যে কয়েক বছরের মধ্যে ইসরো কয়েকটা অভূতপূর্বপ্রকল্প সাফল্যের সঙ্গে সম্পূর্ণ করেছে। মঙ্গল গ্রহে মার্স মিশন, ‘ মঙ্গলযান ’ পাঠানোর সাফল্যের পরসম্প্রতি মহাকাশ অভিযানের ক্ষেত্রে এক বিশ্বরেকর্ড স্থাপন করেছে ইসরো। ১০৪টি স্যাটেলাইট একসঙ্গে মাহাকাশে পাঠিয়ে ইতিহাস রচনা করাবিশ্বের প্রথম দেশ ভারতবর্ষ। আর এটাও খুশির কথা যে এটা পি-এস-এল-ভির ৩৮তম ধারাবাহিকসফল উৎক্ষেপণ। এটা শুধু ইসরো নয়, গোটা ভারতবর্ষের পক্ষে এক ঐতিহাসিক সাফল্য। ইসরোরএই খরচ সাশ্রয়ী কার্যকরী মহাকাশ কর্মসূচি সারা পৃথিবীর কাছে এক বিস্ময় হয়ে দেখাদিয়েছে আর তাই সারা বিশ্ব খোলা মনে ভারতের বৈজ্ঞানিকদের সাফল্যের প্রশংসা করেছে। যুবকদের এবং মহিলাদেরএই দুর্দান্ত সহযোগিতা ইসরোর সাফল্যের এক বড় গৌরবজনক দিক। আমি দেশবাসীদের পক্ষথেকে ইসরোর বৈজ্ঞানিকদের ভূয়সী প্রশংসা করছি। সাধারণ মানুষের জন্য, রাষ্ট্রেরসেবার জন্য মাহাকাশ বিজ্ঞানকে প্রয়োগ করার উদ্দেশ্যকে তাঁরা সবসময় অটুট রেখেছেন আরনিত্যদিন নতুন নতুন কৃতিত্বের রচনা করে চলেছেন। আমাদের এই বৈজ্ঞানিকদের, তাঁদেরপুরো টীমকে আমরা যতই প্রশংসা করি না কেন ততই তা কম হবে। শোভাজী আর একটি প্রশ্ন রেখেছেন এবং তা ভারতের সুরক্ষা সম্পর্কিত। এই বিষয়েভারত এক বড় সাফল্য পেয়েছে। এই ব্যাপারটার নিয়ে খুব বেশি চর্চা এখনও অবধি হয় নিকিন্তু শোভাজীর নজর পড়েছে এদিকে। প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে ভারত ব্যালিস্টিকইন্টারসেপ্টর মিসাইলের সফল পরীক্ষা সম্পন্ন করেছে। ইন্টারসেপশন প্রযুক্তিতে বলীয়ানএই ক্ষেপণাস্ত্র নিজের পরীক্ষামূলক উড়ানের সময় মাটি থেকে প্রায় একশ কিলোমিটার উপরেশত্রুর ক্ষেপণাস্ত্রকে আটকে দিয়ে সাফল্য সূচিত করেছে। প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রে এ একগুরুত্বপূর্ণ সাফল্য। আর আপনারা জেনে খুশি হবেন যে বিশ্বে খুব বেশি হলে চারটি বাপাঁচটি দেশের এই দক্ষতা রয়েছে। ভারতের বৈজ্ঞানিকরা এটা করে দেখিয়েছেন। আর এর শক্তিএমনই যে যদি দু ’ হাজার কিলোমিটার দূর থেকেওভারতকে আক্রমণের লক্ষ্যে কোনো মিসাইল ছোঁড়া হয়, তবে এই মিসাইল শূন্যেই সেটাকে নষ্টকরে দেবে। যখন নতুন প্রযুক্তি দেখি, কোনো নতুন বৈজ্ঞানিক সাফল্য দেখি, তখন আনন্দ হয়আমাদের। আর মানব জীবনের বিকাশের ধারায় জিজ্ঞাসা এক বড় ভূমিকা পালন করেছে। আর যিনিবিশেষ বুদ্ধিধর তিনি জিজ্ঞাসাকে জিজ্ঞাসা রূপে রাখতে দেন না, উনি তার মধ্যেওপ্রশ্নের সঞ্চার করেন, নতুন জিজ্ঞাসা খুঁজে বেড়ান, নতুন জিজ্ঞাসার সৃষ্টি করেন। আরসেই জিজ্ঞাসাই নতুন আবিষ্কারের কারণ হয়ে ওঠে। এঁরা ততক্ষণ শান্ত হন না যতক্ষণ সেইপ্রশ্নের উত্তর না পাওয়া যায়। আর হাজার হাজার বছরের মানব জীবনের বিকাশের ধারাকেযদি আমরা দেখি, তাহলে আমরা বলতে পারি যে মানব জীবনের এই বিকাশের ধারায় কোথাওপূর্ণচ্ছেদ নেই। ব্রহ্মাণ্ডকে, সৃষ্টির নিয়মসমূহকে, মানুষেরমনকে জানার প্রয়াস নিরন্তর চলতে থাকে। নতুন বিজ্ঞান, নতুন প্রযুক্তি তার মধ্যেথেকেই জন্ম নেয়। আর প্রতিটি প্রযুক্তি, বিজ্ঞানের প্রতিটি নতুন রূপ, এক নতুন যুগেরজন্ম দেয়। আমার প্রিয় তরুণেরা, যখন আমরা বিজ্ঞানের কথা বলি,বৈজ্ঞানিকদের কঠোর শ্রমের কথা বলি, আমার মনে পড়ে আমার এই ‘মন কী বাত’ অনুষ্ঠানেকয়েকবার বলেছি যে তরুণ প্রজন্মের বিজ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ থাকা উচিত। দেশে অনেক –অনেক বৈজ্ঞানিকের প্রয়োজন। আজকের বৈজ্ঞানিক আগামী প্রজন্মের জীবনে স্থায়ীপরিবর্তনের সূচনা করবেন। এখানেই আমি আমাদের দীন দরিদ্র মৎস্যজীবীদের কাজে আসারমতো একটা উদ্ভাবন দেখলাম। একটা বিশেষ অ্যাপ তৈরি করা হয়েছে। সামান্য একটা অ্যাপবলে দেবে মৎস্যজীবীরা কোন অঞ্চলে গেলে সব থেকে বেশি মাছ পাবেন, সেখানে ঢেউ কতটা,বাতাসের গতি কী রকম ইত্যাদি। সব তথ্য একটা অ্যাপ-এর সাহায্যে জানতে পারলে আমাদেরমৎস্যজীবীরা অনেক কম সময়ে অনেক বেশি মাছ ধরতে পারবেন এবং তাঁদের আর্থিক পরিস্থিতিরউন্নতি হবে। বিজ্ঞান কখনো কিছু সমস্যার সমাধানে অসামান্য ভূমিকা পালনকরে। দুজন বৈজ্ঞানিক পরিস্থিতির গুরুত্ব বুঝে গবেষণা শুরুকরে এমন বাড়ি তৈরির প্রযুক্তি বের করেছেন যাতে প্রবল বৃষ্টিতেও বাড়ি অটুট থাকবে,বাড়ির বাসিন্দাদের নিরাপদ রাখবে, জমা জল থেকে রক্ষা করবে, এমনকি জলবাহিত রোগেরপ্রাদুর্ভাব ঠেকাবে। এমনই সব উদ্ভাবন এই প্রতিযোগিতা থেকে পাওয়া গেল। এতো কথা বলার কারণ আমাদের সমাজে, আমাদের দেশে এমন সবগুরুত্বপূর্ণ কাজের মানুষ রয়েছেন সেটাই জানানো। মনে রাখতে হবে সমাজ ক্রমাগতপ্রযুক্তি তাড়িত হয়ে উঠছে। বিভিন্ন পরিষেবাও প্রযুক্তি তাড়িত হতে চলেছে। বলতে গেলেপ্রযুক্তি জীবনের অভিন্ন অঙ্গ হয়ে উঠেছে। কিছুদিন ধরেই ‘ডিজি ধন’-এর বিস্তার দেখাযাচ্ছে। ধীরে ধীরে মানুষ নগদ কেনাবেচা ছেড়ে ‘ digitalcurrency ’-তে অভ্যস্ত হয়ে উঠছে। ভারতেরডিজিট্যাল ট্র্যানজেকশনের হার বাড়ছে। বিশেষ করে যুব সমাজ তাদের হাতের মোবাইল থেকেইডিজিট্যাল পেমেন্ট সেরে নিচ্ছেন। এটা একটা শুভ লক্ষণ বলেই আমি মনে করি। ‘লাকিগ্রাহক যোজনা’, ‘ডিজি ধন ব্যাপার যোজনা’য় বিপুল সাড়া মিলছে। প্রায় দু’মাস হয়ে গেল,এই দুই যোজনা থেকে প্রতিদিন ১৫ হাজার মানুষ ১ হাজার টাকা করে পুরস্কার পাচ্ছেন। এইদুই যোজনার দরুণ ডিজিট্যাল আদানপ্রদানের জোয়ার এসেছে, একটা জন আন্দোলনের চেহারানিয়েছে। আনন্দের কথা হল এখনও পর্যন্ত ‘ডিজি ধন যোজনা’য় প্রায় দশ লক্ষ সাধারণ মানুষপুরস্কার পেয়েছেন, ৫০ হাজারেরও বেশি ব্যবসায়ী পুরস্কৃত হয়েছে এবং প্রায় দেড়শ কোটিটাকা পুরস্কার হিসেবে দেওয়া হয়েছে। এই যোজনায় অংশ নিয়ে অনেকেই ১ লক্ষ টাকাপুরস্কার পেয়েছেন। তারপরশ্রীমান সন্তোষ যা লিখেছেন আপনাদের সঙ্গে share করা উচিত বলেই আমি মনে করি। উনি লিখেছেন ১ হাজার টাকাপুরস্কার পাওয়ার পর আমার মনে পড়লো এক বৃদ্ধার বাড়িতে কিছুদিন আগে আগুন লেগে সব পুড়েনষ্ট হয়ে গেছে। সেই বৃদ্ধাকেই এই এক হাজার টাকা দিয়ে দেওয়া উচিৎ এবং এটা তাঁরইপ্রাপ্য। আপনি এক বিরাট প্রেরণাদায়ক কাজ করেছেন। দিল্লির ২২ বছরের গাড়িচালক সবীর, নোট বাতিলের পর ডিজিট্যালব্যবসার সঙ্গে যুক্ত হয়েছিলেন এবং ‘লাকি গ্রাহক যোজনা’য় অংশগ্রহণ করে ১ লক্ষ টাকাপুরস্কার জিতে নিয়েছেন। একদিকে তিনি যেমন গাড়ি চালাচ্ছেন, অন্যদিকে ‘লাকি গ্রাহকযোজনা’র অ্যাম্বাসেডর হয়ে উঠেছেন। মহারাষ্ট্র থেকে এক যুব সাথী পূজা নেমাঢ়ে একজন স্নাতকোত্তরছাত্রী পরিবারের মধ্যে ‘রূপে’ কার্ড, ‘ই-ওয়ালেট’-এর ব্যবহার কেমন ভাবে হচ্ছে আর এইব্যাপারে তাঁরা কত আনন্দিত সেই বিষয়ে তাঁর অনুভূতি নিজের বন্ধুদের সঙ্গে আলোচনাকরেন। এক লক্ষ টাকার পুরস্কার তাঁর জন্য বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ এবং এটাকে একটা মিশনহিসাবে নিয়ে তিনি অন্যদেরও এই কাজে উৎসাহিত করছেন। এই কাজ এক প্রকারে দুর্নীতিএবং কালো টাকার বিরুদ্ধে যে লড়াই, তাতে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই কাজেরসঙ্গে যাঁরা জড়িয়ে আছেন, সবাই আমার দৃষ্টিতে দেশের মধ্যে এক নতুন anti-corruption cadre । আপনি একপ্রকারের শুচিতা সৈনিক। ১৪-ই এপ্রিলে এক বর্ণাঢ্য অনুষ্ঠানে ‘কোটি টাকার লাকি ড্র’-এর পুরস্কারঘোষণা হবে। কিছুদিন আগেই বাবাসাহেব আম্বেদকরের ১২৫-তমজন্ম-জয়ন্তী পেরিয়ে গেল। তাঁকে স্মরণ করে আপনিও ন্যূণতম ১২৫ জনকে ‘ভীম’ অ্যাপ্‌ডাউনলোড করতে শেখান। এবারের বাবাসাহেব আম্বেদকারের জন্ম-জয়ন্তীআর ‘ভীম’ অ্যাপ – এদের বিশেষভাবে গুরুত্ব দিন। তাই আমি বলতে চাই, ড. বাবাসাহেবআম্বেদকর যে ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছিলেন, আমাদের সেটাকে মজবুত করতে হবে। ঘরেঘরে গিয়ে সবাইকে নিয়ে ১২৫ কোটি লোকের হাতে ‘ভীম’ অ্যাপ পৌঁছে দিতে হবে। বিগতদু-তিন মাস ধরে এই যে আন্দোলন চলছে, তার সাফল্য অনেক গ্রাম ও শহরে পাওয়া যাচ্ছে। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদের দেশের অর্থব্যবস্থারমূলে কৃষির অনেক অবদান রয়েছে। গ্রামের আর্থিক শক্তি, দেশের আর্থিক গতিকে শক্তিপ্রদান করে। আজ আমি এক আনন্দের কথা আপনাদের বলতে চাই। আমাদের কৃষক ভাই-বোনেরা অনেকপরিশ্রম করে অন্নের ভাণ্ডার ভরে দিয়েছেন। আমাদের দেশের কৃষকদের পরিশ্রমের ফলে এইবছর সর্বাধিক ধানের উৎপাদন হয়েছে। সবরকমের তথ্য এটা জানিয়ে দিচ্ছে যে, আমাদেরকৃষকরা পুরনো সব রেকর্ড ভেঙে দিয়েছেন। এবছর ক্ষেতের মধ্যে ফসল যেভাবে ঢেউ তুলেছে,প্রত্যেক দিনই মনে হচ্ছে পোঙ্গল বা বৈশাখী উৎসব পালন করি। এই বছর দেশে প্রায়দু’হাজার সাত কোটি টনেরও বেশি খাদ্যশস্য উৎপাদিত হয়েছে। আমাদের কৃষকদের সর্বশেষ যেরেকর্ড লেখা ছিল, তার থেকেও আট শতাংশ বেশি। এটা এক অভূতপূর্ব প্রাপ্তি। আমিবিশেষভাবে দেশের কৃষকদের ধন্যবাদ দিতে চাই। এটা কেবল ডালের উৎপাদন নয়, এটা হল কৃষকদের দ্বারাদেশের দরিদ্রদের সবথেকে বড় সেবা। আমার একটা প্রার্থনাকে, একটা অনুরোধকে শিরোধার্য করেআমার দেশের কৃষক ভাই-বোনেরা যে পরিশ্রম করেছেন, রেকর্ড পরিমাণ ডালের উৎপাদনকরেছেন, সেজন্য তাঁরা আমার বিশেষ ধন্যবাদের অধিকারী। আমার প্রিয় দেশবাসী, আমাদেরদেশে সরকারের দ্বারা, সমাজের দ্বারা, বিভিন্ন সংস্থার দ্বারা, সংগঠনের দ্বারা –সবার মাধ্যমে পরিচ্ছন্নতার জন্য কিছু না কিছু কার্যক্রম চলছেই। কিছু না কিছু ভাবেসবারই এক প্রকারে পরিচ্ছন্নতার প্রতি সচেতনতা চোখে পড়ছে। সরকারও নিরন্তর চেষ্টাকরে চলেছে। বিগত দিনে ভারত সরকারের যে ‘পানীয় জল এবং স্বচ্ছতা’ মন্ত্রক রয়েছে, তারসচিবের নেতৃত্বে ২৩-টি রাজ্যের সরকারের বরিষ্ঠ আধিকারিকদের নিয়ে একটি অনুষ্ঠানতেলেঙ্গানাতে সম্পন্ন হল। তেলেঙ্গানা রাজ্যের ওয়ারাঙ্গালে শুধু বন্ধ ঘরে সেমিনারনয়, সরাসরি পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। ১৭ এবং ১৮-ই ফেব্রুয়ারিহায়দ্রাবাদে ‘ Toilet Pit Emptying Exercise ’-এর আয়োজন করা হয়েছিল। ছ’টি ঘরের টয়লেট পিট পরিস্কার করাহয়েছে এবং আধিকারিকরা নিজেরাই দেখালেন ‘ TwinPit Toilet ’ বানানো গর্তকে খালি করে কীভাবেআবার ব্যবহারযোগ্য করা যায়। তাঁরা এটাও দেখালেন যে এই নতুন পদ্ধতির শৌচালয় কতটাসুবিধাজনক, আর একে খালি করা থেকে পরিস্কার করা পর্যন্ত অন্য কোনও অসুবিধা বা সংকোচবা মানসিক দ্বিধা থাকে না। আমরাও ছোট-খাট সাফাইয়ের কাজ করি, যেমন শৌচালয়ের গর্তআমরাই পরিস্কার করতে পারি। এই প্রচেষ্টার ফল হলো, দেশের সংবাদ মাধ্যম এসবের খুবপ্রচার করলো, গুরুত্বও দিয়েছে। আর যখন এক I A S অফিসার নিজে টয়লেটের গর্তপরিস্কার করেন তখন সেদিকে দেশের দৃষ্টি আকর্ষণ খুবই স্বাভাবিক। যাকে আমরা টয়লেটপিট-এর ময়লা বলে জানি, তাকে সার হিসেবে দেখলে, এতো এক প্রকারের কালো সোনা। ছয় সদস্যেরপরিবারের জন্য একটি ‘ Standard Twin PitToilet ’ প্রায় পাঁচ-ছ’বছরে ভরে যায়। এর পরে নোংরাকেসহজেই অন্য গর্তে স্থানান্তরিত করা যেতে পারে। ছ’মাস-এক বছরে গর্তে জমা নোংরা পুরোপচে যায়। এই পচা আবর্জনা পরিস্কার করা পুরোপুরি সুরক্ষিত আর সারের দিক থেকেগুরুত্বপূর্ণ সার হল ‘ NPK ’। আমাদের কৃষকরা NPK -র সঙ্গে বেশ ভালোভাবেই পরিচিত। যেভাবে সরকার এই পদক্ষেপ নিয়েছেঅন্যরাও এই ধরনের অন্য অনেক পদক্ষেপ নিয়েছেন। আর এখনতো দূরদর্শনে পরিচ্ছন্নতা নিয়েএকটি বিশেষ সংবাদ অনুষ্ঠান হয়। এর মাধ্যমে বিভিন্ন বিষয় যত প্রকাশ পাবে ততই লাভহবে। বিভিন্ন সরকারি বিভাগ ও আলাদা আলাদা ভাবে পরিচ্ছন্নতা পক্ষ পালন করে। মার্চমাসের প্রথম পক্ষে মহিলা ও শিশু উন্নয়ন মন্ত্রক এবং একই সঙ্গে জনজাতি উন্নয়নমন্ত্রক পরিচ্ছন্নতা অভিযানে সামিল হবে। মার্চ মাসের দ্বিতীয় পক্ষে আরও দুটিমন্ত্রক ‘নৌপরিবহন’ মন্ত্রক এবং ‘জলসম্পদ, নদী উন্নয়ন এবং গঙ্গা পুনরুজ্জীবন’মন্ত্রক স্বচ্ছতা অভিযান চালাবে। আমরা জানি যে আমাদের দেশের যেকোনো নাগরিক যখন কোনও উল্লেখযোগ্য কাজ করে তখন সমগ্র দেশ এক নতুন শক্তি লাভ করে,আত্মবিশ্বাস বেড়ে যায়। রিও প্যারালিম্পিক্স-এ আমাদের দিব্যাঙ্গ খেলোয়াড়রা যে ধরনেরফল করেছে তাকে আমরা সকলে স্বাগত জানিয়েছি। এই মাসে আয়োজিত ‘ব্লাইণ্ড টি-২০ ওয়ার্ল্ডকাপ ফাইনাল’-এ ভারত পাকিস্তানকে হারিয়ে ক্রমাণ্বয়ে দ্বিতীয় বার ওয়ার্ল্ডচ্যাম্পিয়ন হয়ে দেশের গৌরব বৃদ্ধি করেছে। আমি পুনরায় এই দলের সব খেলোয়াড়কে অভিনন্দনজানাচ্ছি। আমাদের এই দিব্যাঙ্গ বন্ধুদের সাফল্যে দেশ গৌরবান্বিত। আমি সব সময় এটামানি যে দিব্যাঙ্গ ভাই-বোনেরা সমর্থ, দৃঢ় চিত্ত, সাহসী এবং সংকল্পে অটুট। সব সময়আমরা তাঁদের কাছ থেকে নতুন কিছু শিখতে পারি। খেলাধুলার ক্ষেত্রেই হোক বা মহাকাশবিজ্ঞান – আমাদের দেশের মেয়েরা কোনও ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই। পায়ে পায়ে তারা এগিয়েচলেছে এবং নিজেদের সাফল্যে দেশকে গৌরবাণ্বিত করছে। কিছু দিন আগে ‘এশিয়ান রাগবিসেভেন’স ট্রফি’-তে আমাদের মহিলা খেলোয়াড়েরা রৌপ্য পদক জিতেছে। এই সব খেলোয়াড়দেরআমি অনেক অভিনন্দন জানাচ্ছি। ৮-ই মার্চ সমগ্র বিশ্বে মহিলাদিবস পালিত হয়। কন্যাসন্তানের গুরুত্ব বিষয়ে পরিবার ও সমাজে সচেতনতা বৃদ্ধিরউদ্দেশে আরও বেশি সংবেদনশীল হওয়ার পক্ষে ভারতেও এই দিনটি পালিত হয়। ‘বেটি বাঁচাও –বেটি পড়াও’ আন্দোলন দ্রুত গতিতে এগিয়ে চলেছে। যখন এই ধরনের খবরপাওয়া যায় যে কন্যাসন্তানের জন্ম উপলক্ষে উৎসব পালিত হয়েছে, তখন সত্যিই খুব আনন্দহয়। কন্যাসন্তানের প্রতি এই ধরনের ইতিবাচক চিন্তাধারা সামাজিক স্বীকৃতির পথকেপ্রশস্ত করে। আমি জানতে পারলাম যে, তামিলনাড়ু রাজ্যের ‘ Cuddalore ’ জেলা এক বিশেষঅভিযান চালিয়ে বাল্যবিবাহ বন্ধ করতে সমর্থ হয়েছে। এখনও পর্যন্ত ১৭৫-টিরও বেশি বাল্যবিবাহঅনুষ্ঠান বন্ধ করা গেছে। ‘সুকন্যা সমৃদ্ধি যোজনা’-তে প্রায় ৫৫-৬০ হাজারেরও বেশিব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। আমরা যখন ৮-ই মার্চ মহিলা দিবস পালন করবো, তখন আমাদের একটাইঅনুভূতি, – আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘মন কি বাত’-এর মাধ্যমে অনেক সময় আপনাদের বিভিন্ন খবরদেওয়ার সুযোগ হয়। আপনারা সক্রিয়ভাবে এর সঙ্গে যুক্ত থাকেন। আপনাদের কাছ থেকে আমিঅনেক কিছু জানতে পারি। পৃথিবীতে কোথায় কী হচ্ছে, গ্রামের দরিদ্র মানুষদের চিন্তা-ভাবনাআমার কাছে পৌঁছচ্ছে। আপনাদের সহযোগিতার জন্য আমি অত্যন্ত কৃতজ্ঞ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তামিলানাডুর ঘূর্ণিঝড়ে জীবনহানির ঘটনায় শোক প্রকাশ করেছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “তামিলানাডুর বিভিন্ন অংশে ঘূর্ণিঝড়ে যাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, আমি তাঁদের পরিবার-পরিজনকে সমবেদনা জানাই। আমি আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করি। ঘূর্ণিঝড়ে ক্ষতিগ্রস্তদের সবরকম সহায়তা দিতে আধিকারিকরা কাজ করছেন। তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী থিরু এডাপাডি কে পালানিস্বামীর সঙ্গে রাজ্যে ঘূর্ণিঝড়ের ফলে সৃষ্ট পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেছি। কেন্দ্রের তরফে সম্ভাব্য সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। “বিহারের মধুবনী জেলায় বাস দুর্ঘটনার সংবাদে আমিগভীরভাবে বেদনাহত। সুরিনামে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায় সেদেশের উন্নয়নের পাশাপাশি ভারত ও সুরিনামের ঐতিহাসিক সম্পর্কে আরও ঘনিষ্ঠ করার লক্ষ্যে যে সক্রিয় ভূমিকা নিয়েছে প্রধানমন্ত্রী তার প্রশংসা করেন। ভারতীয় তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান(সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্ব) বিল, ২০১৭ পাশ হলো কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবারেরবৈঠকে কিছু বিষয়ের অনুমোদন দিয়েছে| যেমন — ১) ভারতীয় তথ্য-প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান (সরকারি-বেসরকারি অংশিদারিত্বে) বিল,২০১৭ উত্থাপনের অনুমোদন; ২) সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বের ক্ষেত্রে পনেরোটি ভারতীয় তথ্য-প্রযুক্তিপ্রতিষ্ঠানকে বিধিবদ্ধ মর্যাদা প্রদান এবং তাদেরকে জাতীয় গুরুত্বের প্রতিষ্ঠানহিসেবে ঘোষণা; ৩) এই প্রতিষ্ঠানগুলির দ্বারা কোর্সগুলির ক্ষেত্রে ছাত্রছাত্রীদের ডিগ্রিদেওয়ার ক্ষেত্রে সক্ষমতা প্রদান| প্রসঙ্গত, তাঁর এই ভিডিও বার্তাটি আজ হিসারে গুরু জাম্বেশ্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি অনুষ্ঠানে সকলকে শোনানো হয়। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, মাদক যে ‘স্টাইল স্টেটমেন্ট’ নয়, সে বিষয়ে যুবসমাজকে সচেতন হতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “সাধারণ শ্রেণিভুক্ত তথাপি আর্থিকভাবে দুর্বল মানুষের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ প্রদানে লোকসভায় গতকাল আমরা এক ঐতিহাসিক বিল পাশ করেছি। এই বিলটি ‘সকলকে সঙ্গে নিয়ে, সকলের বিকাশে’র জন্য আমাদের দৃঢ় সঙ্কল্পকে আরও মজবুত করে।” নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী অসম ও উত্তর-পূর্ববাসী মানুষকে আশ্বাস দিয়ে বলেন, তাঁদের অধিকার ও যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা সুরক্ষিত রাখা হবে। তিনি আরও বলেন, “এই বিলটি পাকিস্তান, বাংলাদেশ ও আফগানিস্তানে বসবাসকারী ভারতমাতার পুত্র ও কন্যাদের ভারতীয় নাগরিকত্ব প্রদানের পথ প্রশস্ত করেছে। বহু ঐতিহাসিক উত্থান-পতন দেখার পর আমাদের এই ভাই-বোনেরা ভারতের অঙ্গ ও অংশ হয়ে উঠতে চায়।” প্রধানমন্ত্রী আজ সোলাপুরে একাধিক উন্নয়নমূলক প্রকল্প উদ্বোধনের পর ইন্দিরা গান্ধী স্টেডিয়ামে এক জনসভায় ভাষণ দেন। শ্রী মোদী, ‘প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা’র আওতায় ৩০ হাজার গৃহ নির্মাণের এক কর্মসূচির শিলান্যাস করেন। তিনি বলেন, “আজ আমরা গরিব, শ্রমিক শ্রেণীর পরিবারগুলির জন্য ৩০ হাজার গৃহ নির্মাণের এক কর্মসূচির উদ্বোধন করেছি। এই কর্মসূচির সুফলভোগীদের মধ্যে রয়েছেন কারখানার শ্রমিক, রিক্সা চালক, অটো চালক প্রভৃতি। আমি আপনাদের আশ্বস্ত করে বলতে চাই যে খুব শীঘ্রই আপনারা এই বাড়ির চাবি হাতে পাবেন।” মধ্যবিত্ত শ্রেণীর পরিবারগুলির জন্যও সুলভে আবাসন নির্মাণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। এখন থেকে এঁরা ২০ বছরের মেয়াদকালে গৃহঋণের ক্ষেত্রে ৬ লক্ষ টাকা পর্যন্ত সাশ্রয় করতে পারবেন। আঞ্চলিক বিমান যোগাযোগ কর্মসূচি ‘উড়ান’ যোজনার আওতায় সোলাপুর থেকে বিমান পরিষেবা চালু করার প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে বলেও তিনি জানান। স্বচ্ছ ভারত ও সুস্থ ভারত সম্পর্কে তাঁর পরিকল্পনার অঙ্গ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী সোলাপুরে ভূগর্ভস্থ নিকাশি ব্যবস্থা সহ তিনটি বর্জ্য পরিচালনা কেন্দ্র জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন। নতুন এই নিকাশি ব্যবস্থার ফলে সোলাপুর শহরে নিকাশি ব্যবস্থার পাশাপাশি অনাময় ব্যবস্থায় উন্নতি ঘটবে। এই উদ্যোগের ফলে পরিষেবা প্রদান ক্ষেত্রে লক্ষ্যণীয় অগ্রগতি ঘটবে এবং সাধারণ মানুষের কল্যাণে প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে জনস্বাস্থ্য ব্যবস্থায় উন্নতি হবে। আন্তর্জাতিক হীরক সম্মেলন উপলক্ষে আয়োজিত এই নৈশভোজের অনুষ্ঠানে আপনাদের সামনে বক্তব্য রাখারসুযোগ পেয়ে আমি আনন্দিত। ভারতের রত্ন ও অলঙ্কার রপ্তানি প্রসার পরিষদের সুবর্ণজয়ন্তী উৎসব পালনের একটি বিশেষ অঙ্গ হিসেবেই আয়োজন এই সম্মেলনের। বিশ্বের বিভিন্নখনি সংস্থা, হীরে ব্যবসায়ী সংস্থা, রপ্তানিকারক, খুচরো বিক্রেতা, ব্যাঙ্ককর্তৃপক্ষ এবং বিশ্লেষকরা সমবেত হয়েছেন “খনি থেকে বাজার, ২০১৭” – এই মূল বিষয়টিকে অবলম্বনকরে আয়োজিত এই সম্মেলনে। আজথেকে ৫০ বছর আগে পরিষদ গঠনের পর থেকে সংশ্লিষ্ট শিল্পক্ষেত্রে দ্রুত প্রসার ওঅগ্রগতি হয়েছে আমাদের দেশে। আপনারা সকলেই অবগত যে ভারত হল বর্তমানে বিশ্বের কাটাএবং পালিশ করা হীরের বৃহত্তম উৎপাদক একটি দেশ । রপ্তানি মূল্য এবংকর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি – উভয় দিক থেকেই ভারতের রত্ন ও অলঙ্কার শিল্প হয়েউঠেছে একটি গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্র। গত চার দশকে হীরে উৎপাদক ও রপ্তানিকারক দেশহিসেবে উত্থান ঘটেছে ভারতের। বন্ধুগণ,এই সেদিন পর্যন্ত ভারতীয় আমদানিকারকদের বিদেশে গিয়ে কাঁচা হীরে দেখে, বেছে কিনেআনতে হত। ২০১৪-র ডিসেম্বরে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত বিশ্ব হীরক সম্মেলনে রাশিয়ারপ্রেসিডেন্টের উপস্থিতিতে আমি ঘোষণা করেছিলাম যে এই ঘটনাকে বাস্তবায়িত করে তুলতেএক বিশেষ বিজ্ঞাপিত অঞ্চল গড়ে তুলব আমরা । এই প্রতিশ্রুতি আমরা রক্ষা করেছি। কাঁচা হীরেশুল্কমুক্ত উপায়ে দেখে এবং যাচাই করে আমদানি-রপ্তানির বিষয়টি যাতে সম্ভব করে তোলাযায় সেজন্য সংশ্লিষ্ট আইনে সংশোধনও আনা হয়েছে। বিশেষ বিজ্ঞাপিত অঞ্চল গড়ে তোলাহয়েছে ২০১৫-র নভেম্বর মাসে। তার ইতিবাচক ফলও আমরা ইতিমধ্যেই লক্ষ্য করেছি। অতীতেবেলজিয়াম, আফ্রিকা এবং ইজরায়েল সফর করে বিশ্বের কাঁচা হীরে দেখা ও যাচাই করারসৌভাগ্য ঘটত মাত্র ৮০ থেকে ৯০টি বড় বড় বাণিজ্যিক সংস্থার। কিন্তু নতুন বিশেষবিজ্ঞাপিত অঞ্চলের আওতায় এই সুযোগ বর্তমানে লাভ করছে প্রায় ৩ হাজার ক্ষুদ্র ওমাঝারি বাণিজ্যিক সংস্থা। হীরক শিল্পে সবচেয়ে নামী-দামি বাণিজ্যিক সংস্থাগুলিরঅনেকেই হীরে দেখে, বেছে কেনার জন্য ২৪৪ দিনেরও বেশি সময় ব্যয় করেছে। ভারতইতিমধ্যেই হীরে কাটা এবং পালিশ করার ক্ষেত্রে একটি উল্লেখযোগ্য কেন্দ্র হয়ে উঠেছে।আমার লক্ষ্য হল দেশকে হীরের এক আন্তর্জাতিক বাণিজ্য কেন্দ্র রূপে গড়ে তোলা। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচি তারই অন্যতম। নির্মাণ তথা উৎপাদনশিল্পের ক্ষেত্রে একটি পছন্দের গন্তব্য হিসেবে আমরা তুলে ধরতে চাই ভারতকে। গত ৫০বছরে রত্ন ও অলঙ্কার শিল্পে রপ্তানি বাণিজ্যের অর্থমূল্য দাঁড়িয়েছে ৪৭৫ মিলিয়নমার্কিন ডলার। এই কর্মসূচির লক্ষ্য হল যাঁরা নতুন কর্মী হিসেবে যোগ দেবেন, তাঁদেরএমনভাবে দক্ষ করে গড়ে তোলা যাতে একুশ শতকের অর্থনীতিতে তাঁরা বিশেষ অবদানের নজিররাখতে পারেন। রত্ন ও অলঙ্কার শিল্পে যুক্ত রয়েছেন ৪০ লক্ষ ৬০ হাজার কর্মী। তাঁদেরমধ্যে ১০ লক্ষ মানুষের রুজি-রোজগারের ক্ষেত্র হল হীরে শিল্প। সুতরাং, ‘মেক ইনইন্ডিয়া’ এবং ‘স্কিল ইন্ডিয়া’ গড়ে তোলার সম্ভাবনার ক্ষেত্রে রত্ন ও অলঙ্কারশিল্পকে একটি দৃষ্টান্ত হিসেবে তুলে ধরা যেতে পারে। আজএখানে আমাদের সঙ্গেই উপস্থিত রয়েছেন আফ্রিকার কয়েকটি দেশের মন্ত্রী মহোদয়রা। ঐ অঞ্চলেরসঙ্গে ভারতের এক বিশেষ ও সুন্দর সম্পর্ক রয়েছে। উপনিবেশবাদ-পরবর্তী ঐতিহ্যের ধারাএবং উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলির সাদৃশ্য ভারত ও আফ্রিকাকে পরস্পরের স্বাভাবিক অংশীদার করেতুলেছে। আমি এই সুযোগে আমার আফ্রিকার বন্ধুদের আশ্বাস দিতে চাই যে তাঁদের রত্ন ওঅলঙ্কার শিল্পের বিকাশে এবং শিল্পীদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার ক্ষেত্রে ভারত সানন্দেইসাহায্য ও সমর্থন যুগিয়ে যেতে প্রস্তুত। আমিশুরুতেই উল্লেখ করেছি যে কিভাবে একটি ক্ষেত্র তার যাত্রা শুরু করে বর্তমান অবস্থায়এসে পৌঁছেছে। কিন্তু মনে রাখতে হবে যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যের থেকে আমাদের বর্তমানঅবস্থান কিন্তু বেশ দূরে। আমাদের শক্তির মূল ক্ষেত্রটি হল হীরে কাটা ও পালিশ করারশিল্প। রত্ন ও অলঙ্কারের আন্তর্জাতিক মূল্য সংযোজনের ক্ষেত্রে আমাদের অবদান কিন্তুএখনও যথেষ্ট নয়। শুধুমাত্র হীরে কাটা ও পালিশ করার মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকলে চলবে না।ভবিষ্যতে আমাদের তা ছাপিয়ে যেতে হবে আরও অনেক দূর। এমন কিছু সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রআমাদের রয়েছে, যা এযাবৎকাল অনাবিষ্কৃতই থেকে গেছে। ধরুন, যদি আপনাদের আমি প্রশ্নকরি যে অলঙ্কার বিপণনের ক্ষেত্রে ভারতের অবদান বাড়িয়ে তোলার জন্য কি কৌশল আপনারাঅবলম্বন করবেন? এরউত্তরে অনেকেই আমাকে বলে থাকেন যে ভারতের রপ্তানি বাণিজ্য আমদানি-নির্ভর : আমদানিকারকরা যেনকশা এবং খুঁটিনাটি বেছে দেন, তার ওপরই নির্ভর করে চলতে হয় রপ্তানি বাণিজ্যকে। এরঅর্থ, বিশ্বের রুচি বা মান নয়, বরং আন্তর্জাতিক ফ্যাশনকেই অনুসরণ করে যেতে হয়ভারতকে। কিন্তু এই ঘটনা কিন্তু আমাদের অর্জিত অভিজ্ঞতা এবং ডিজাইন বা নকশা তৈরির মেধাবা প্রতিভার ক্ষেত্রে সুবিচার করতে পারে না। একটি উদাহরণ দিয়ে আপনাদের বিষয়টিবোঝানো যাক। দু’হাজারের বছরেরও বেশি সময়কালের ঐতিহাসিক স্থাপত্য ও মূর্তিরপ্রাচুর্য রয়েছে আমাদের দেশে। এই সমস্ত মূর্তি ও স্থাপত্য শিল্পে অলঙ্কারেরউপস্থিতি আমরা লক্ষ্য করেছি। এই শিল্পকর্মগুলি সারা বিশ্বের জনসাধারণকেই আকৃষ্ট ওমুগ্ধ করেছে। কিন্তু আমরা বাস্তবের মাটিতে কি তা যথাযথভাবে তুলে ধরতে পেরেছি? এমনকি কেশ শিল্পীরা তাঁদেরখদ্দেরদের চুল কাটার ফ্যাশনটিও ঠিক করে দেন। আমরা বাস করছি এমন এক যুগে যেখানেহীরে ব্যবহার করা হচ্ছে চশমা, হাতঘড়ি এমনকি কলমেও। আমাদের অলঙ্কার শিল্পীরা কিপারেন না তাঁদের দক্ষতা, ক্ষমতা এবং ঐতিহ্যকে সম্বল করে সারা বিশ্বের পছন্দ ওরুচির ফ্যাশনকে বদলে ফেলতে? বিশ্বেররুচি ও ফ্যাশনকে বদলে ফেলার জন্য আমাদের এই শিল্পক্ষেত্রটির প্রথম প্রয়োজন হলবাজারের গতি-প্রকৃতি সম্পর্কে সম্যক জ্ঞান ও ধারণা অর্জনের। যাই হোক না কেন, মূল কথাটি হল, যদি মূল ক্রেতা বাখরিদ্দারদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সংযোগ ও যোগাযোগ আমরা না গড়ে তুলতে পারি তাহলে বিশ্বকেপথ দেখানো কখনই সম্ভব হবে না। ই-কমার্স, অর্থাৎ বৈদ্যুতিন বাণিজ্য মূল ক্রেতা বাখরিদ্দারদের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগকে অনেক সহজ করে তুলেছে। ভারতীয় শিল্পের কাছে এএক সুবর্ণ সুযোগ। অতীতেএমন একটা সময় ছিল যখন ভারতের কোন কোন পণ্যের খ্যাতি ছিল বিশ্বজোড়া । সংশ্লিষ্ট শিল্পক্ষেত্রটি রাজ্যগুলির সঙ্গে এ ব্যাপারেযোগাযোগ রেখে চলেছে বলে আমি মনে করি। রপ্তানি ছাড়াও দ্রুততম গতিতে বেড়ে ওঠা একটিবিশ্ব অর্থনীতি হিসেবে দেশের অভ্যন্তরীণ চাহিদা বৃদ্ধির বিষয়টিও ভেবে দেখতে হবেভারতকে। ঐ সময়ের মধ্যেকোন কোন লক্ষ্যমাত্রা স্থির করেছে ভারতের রপ্তানি ও অলঙ্কার শিল্প? দেশের জন্য ঐসময়কালের মধ্যে আপনারা কি কি অবদান সৃষ্টি করতে পারেন? ঐ সময়ের মধ্যে এইশিল্পক্ষেত্রটি কোথায় গিয়ে দাঁড়াতে পারে? আপনারা কিভাবেই বা পৌঁছবেন আপনাদেরসুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রায়? কি সংখ্যক নতুন নতুন কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতেপারবেন আপনারা? আমি আপনাদের সকলকেই এ বিষয়টি সম্পর্কে গভীর ও আন্তরিকভাবেচিন্তাভাবনা করে পরিকল্পনা স্থির করার আহ্বান জানাব। যদি মনে করেন নিয়ম-নীতিরক্ষেত্রে পরিবর্তন প্রয়োজন, বেশ, আপনারা আসুন আপনাদের সুনির্দিষ্ট ব্যবহারিক ওবাস্তবসম্মত প্রস্তাব ও পরামর্শ নিয়ে। তা যদি দেশের স্বার্থরক্ষা ও পূরণের অনুকূলহয়ে ওঠে আমরা অবশ্যই সেগুলি বিবেচনা করে দেখব। এইভাবেসকলের সঙ্গে মত ও চিন্তাভাবনা বিনিময়ের সুযোগদানের জন্য আমি আপনাদের ধন্যবাদজানিয়ে আজকের বক্তব্য শেষ করছি। এই সম্মেলনের সর্বাঙ্গীণ সাফল্য আমি কামনা করি। অনুমোদিত করিডর দুটি অন্যান্য পরিবহণ ব্যবস্থার সঙ্গে যেমন রেল স্টেশন এবং আইএসবিটি স্টেশনের সঙ্গে যুক্ত থাকবে। আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, আপনাদের সবাইকে নমস্কার! গত বছর ৩-রা অক্টোবর প্রথমবার ‘মন কি বাত’-এ আমার কথা বলার সৌভাগ্য হয়েছিল। ‘মন কি বাত’-এর এক বছর সম্পূর্ণ – অনেক কথা হলো। আমি জানি না, আপনারা কি পেয়েছেন, কিন্তু আমি এটা অবশ্যই বলতে পারি যে আমি অনেক কিছু পেয়েছি। গণতন্ত্রে জনশক্তির অপার মহিমা আছে। আমার জীবনে এক মৌলিক চিন্তা আছে আর সেজন্যই আমার জনশক্তির ওপর অগাধ বিশ্বাস আছে। ‘মন কি বাত’ আমাকে যা শিখিয়েছে, যা বুঝিয়েছে, যা জেনেছি, যা অনুভব করেছি, তা থেকে বলতে পারি যে, আমরা যতটা ভেবেছি, জনগণের শক্তি তার থেকে অনেক বেশি। আমাদের পূর্বসূরীরা জনতা-জনার্দনের কথা বলেছেন, বলেছেন তাঁরা ঈশ্বরের অংশ। আমি ‘মন কি বাত’ থেকে আমার যে অনুভব হয়ছে, তাতে বলতে পারি যে, আমাদের পূর্বসূরীদের চিন্তাতে মস্ত বড় শক্তি আছে, খুব বড় সত্য আছে, কারণ আমি এটা অনুভব করেছি। ‘মন কি বাত’-এর জন্য আমি সবার কাছ থেকে পরামর্শ চেয়েছি, কিন্তু প্রতিবার হয়ত দু-চারটি পরামর্শ দেখা বা বোঝার চেষ্টা করতে পেরেছি। কিন্তু লক্ষ লক্ষ মানুষ সক্রিয়ভাবে আমাকে পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছেন। এটা নিজেই এক মস্ত বড় শক্তি। নাহলে প্রধানমন্ত্রীকে খবর দিচ্ছেন, mygov.in-এই সাইটে লিখছেন, চিঠি পাঠাচ্ছেন, কিন্তু আমি একটুও সুযোগ পাচ্ছি না সেগুলি দেখার। একদম গ্রাসরুট লেভেল থেকেও বহু খবর সরকারের কাছে এসে পৌঁছচ্ছে। আর সরকারের এটি একটি মৌলিক সিদ্ধান্ত যে খবর নীচ থেকে ওপরতলায় এসে পৌঁছবে, আর পথ দেখানো হবে ওপর থেকে নীচে। একথা কে ভাবতে পেরেছিল যে এই খবরের স্রোতধারা একদিন ‘মন কি বাত’-এ পরিণত হবে। কিন্তু এটা বাস্তবে সম্ভব হয়েছে। আর এভাবেই ‘মন কি বাত’ সমাজের নিজস্ব চিন্তাভাবনা প্রকাশের এক মাধ্যম হয়ে উঠেছে। আমি একবার কথায় কথায় বলেছিলাম selfy with daughter–এর কথা। আর তাই শুনে সারা দুনিয়া আশ্চর্য হয়ে গিয়েছিল। কিন্তু সমস্ত বিশ্ব থেকে লক্ষাধিক selfy with daughter–এর ছবি এসে পৌঁছেছে এবং কন্যাসন্তানেরা এতে গৌরবান্বিত হয়েছেন। আর এইসমস্ত selfy-গুলো যখন অন্যরা দেখছেন, তাঁদের প্রত্যেকেরই মনে হয়েছে তাঁদেরও কন্যাসন্তানের প্রতি উদাসীনতা ত্যাগ করতে হবে। এটা এক নিঃশব্দ বিপ্লব। ভারতের প্রতিটি কোণা থেকে মানুষ লক্ষাধিক সংখ্যায় এইরকম ছবি পাঠিয়েছেন। রাজ্য সরকার বা কেন্দ্রীয় সরকারের পর্যটন বিভাগ ভাবতেও পারেনি যে আমাদের দেশে এত ধরনের অমূল্য সম্পদ আছে। একটা নির্দিষ্ট মঞ্চে সবাইকে আনা সম্ভব হয়েছে সরকারের একটি পয়সাও খরচ না করে। মানুষজন সরকারের কাজ বাড়িয়েছেন। আজ আমি অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে বলতে পারি যে গত একবছরে খাদির বিক্রি প্রায় দ্বিগুণ হয়েছে। আর এটা কোনো সরকারি বিজ্ঞাপনের জন্য হয়নি। কোটি কোটি টাকাও এজন্য খরচ করতে হয়নি। আমার দেশের জনগণ প্রতিটি ছোট ছোট কথাকে গুরুত্ব দিয়ে দেশের কল্যাণে নিজেদেরকে নিয়োজিত করার চেষ্টা করে চলেছেন। এর থেকে বড় আনন্দ আর কি হতে পারে? ‘মন কি বাত’-এর এই পর্বে আমি এক নতুন প্রয়াস গ্রহণ করার কথা ভেবেছি। আমি জনগণের কাছে প্রার্থনা করেছিলাম যে, আপনারা আপনাদের প্রশ্ন, আপনাদের পরামর্শ দূরভাষের মাধ্যমে জানান। আমি ‘মন কি বাত’-এ সেই বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করব। এটা আমার নিজের এক সুখানুভূতি। সব বয়সের মানুষ ফোন করেছেন। কিছু ফোন তো আমি নিজে শুনেছি এবং আমার ভালো লেগেছে। বাকি ফোনগুলি নিয়ে আমার সরকারের অন্য আধিকারিকরা কাজ করছেন। আপনাদের হয়ত ফোন করতে এক-দু’মিনিট সময় লেগেছে, কিন্তু আমার কাছে আপনাদের এই অল্প সময়ের ফোন কল, পরামর্শ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আমার পুরো সরকার আপনাদের পরামর্শ অনুযায়ী কাজ করবে। একটা বিষয়ে আমার খুব আশ্চর্য লেগেছে এবং আনন্দও হয়েছে। এই পঞ্চান্ন হাজার মানুষ তাঁদের নিজেদের মত করে নিজেদের কথা বলেছেন। পুরোপুরি ইতিবাচক কথা, ইতিবাচক পরামর্শ তাঁরা দিয়েছেন। এর একটা কারণ এটা হতে পারে যে যেহেতু তাঁদের টিভি দেখার সৌভাগ্য হয় না, তাই তাঁরা রেডিওটা অবশ্যই শোনেন। এর থেকে আমি এটা বুঝতে পেরেছি যে দৃষ্টিহীন ব্যক্তিদের কাছে রেডিও কতটা গুরুত্বপূর্ণ। রাজস্থানের আলওয়ার থেকে পবন আচার্য আমাকে এক পরামর্শ দিয়েছেন। আমার মনে হয় সকলের এটা শোনা উচিত এবং গোটা দেশের মানুষেরই তা মানা উচিত। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীজীর কাছে আমার বক্তব্য এই যে, এবার মন কি বাত-এ আপনি সারা দেশের মানুষকে অনুরোধ জানান, দীপাবলীতে যেন তাঁরা মাটির প্রদীপ ব্যবহার করেন। এতে যেমন পরিবেশের উপকার হবে, তেমনই হাজার হাজার কুমোর ভাইয়েরা লাভবান হবেন। পরিবেশের দিক থেকেও এর একটা দাম আছে। প্রদীপ তৈরি হয় গরীবদের ঘরে। দরিদ্র মানুষ এই কাজ করে নিজেদের সংসার চালান। আমার প্রিয় দেশবাসী, গণেশ চতুর্থীর দিন সেনাবাহিনীর জওয়ানদের সঙ্গে আমার দু-তিন ঘণ্টা সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছিল। জল, স্থল ও বায়ুপথে সুরক্ষা দেন যাঁরা সেই জলসেনা, স্থলসেনা এবং বায়ুসেনা – আর্মি, এয়ারফোর্স ও নেভি-র জওয়ানদের সঙ্গে আমি সময় কাটিয়েছি। এই প্রদর্শনী আরও কিছুদিন চলবে। আমার অনুরোধ, আপনারা যাঁরা দিল্লির আশেপাশে থাকেন, আপনাদের পরিবারের সঙ্গে এই প্রদর্শনী অবশ্যই দেখুন এবং আমার মত তাড়াহুড়ো করে নয়। আমি তো দু-আড়াই ঘণ্টায় ফিরে এসেছি, আপনারা নিশ্চয়ই ঘণ্টা তিন-চারেক সময় নিয়ে দেখবেন। “প্রধানমন্ত্রী মোদীজী, আমি আপনাকে বলতে চাই যে আপনি যে স্বচ্ছ ভারত অভিযান শুরু করেছেন, তার জন্য সব জায়গায়, সমস্ত গলিতে ডাস্টবিনের ব্যবস্থা করুন।” এই বালকটি ঠিকই বলেছে। স্বচ্ছতাকে আমাদের স্বভাবগত করা উচিত এবং তার জন্য উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া উচিত। এই বালকটির কথা শুনে আমার খুব আনন্দ হয়েছে। আনন্দ এই জন্যই যে ২-রা অক্টোবর আমি স্বচ্ছ ভারত অভিযান চালানোর কথা ঘোষণা করি, আর আমি এটা বলতে পারি যে স্বাধীনতার পর সম্ভবত এই প্রথম সংসদে স্বচ্ছতা নিয়ে আজকাল ঘণ্টার পর ঘণ্টা আলোচনা চলে। আমাদের সরকারের কাজকর্ম নিয়েও আলোচনা হয়। আমাকেও অনেক কথা শুনতে হয়, যে মোদীজী তো স্বচ্ছতা নিয়ে অনেক বড় বড় কথা বলেন, কিন্তু কী হচ্ছে শেষ পর্যন্ত? আমার এতে খারাপ লাগে না। এর মধ্যে আমি ভালোটাই দেখি – দেশের সংসদও এখন ভারতের স্বচ্ছতা নিয়ে আলোচনা করছে। স্থানীয় স্বশাসিত সংস্থা – সেটা পঞ্চায়েত, নগর পঞ্চায়েত, পুর নিগম, মহানগর পৌর নিগম বা রাজ্য অথবা কেন্দ্র – প্রতিটি সংস্থাকে এই বিষয়ে কাজ করতে হবে। আপনারা কি জানেন, মহাত্মা গান্ধী কি বলতেন? মহাত্মা গান্ধী একবার বলেছিলেন, স্বাধীনতা ও স্বচ্ছতা – এই দুটোর মধ্যে যদি আমাকে একটা পছন্দ করতে হয়, তাহলে আমি প্রথমে স্বচ্ছতাকে পছন্দ করবো, স্বাধীনতাকে পরে। গান্ধীজীর কাছে স্বাধীনতার থেকে স্বচ্ছতা বেশি গুরুত্বপূর্ণ ছিল। আসুন, সবাই মহাত্মা গান্ধীর কথা অনুসরণ করি এবং তাঁর ইচ্ছা পূরণ করতে কিছু পদক্ষেপ আমরাও নিই। দিল্লির গুলশন অরোরা mygov.in পোর্টালে একটি বার্তা পাঠিয়েছেন। উনি দীনদয়ালজী-র জন্মশতাব্দী সম্বন্ধে জানতে চেয়েছেন। আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, মহাপুরুষদের জীবন দর্শন আমাদের প্রেরণার উৎস। আর আমাদের কাজ হল মহাপুরুষদের বিচারধারা অনুসরণ করা, তার মূল্যায়ন করার দায়িত্ব আমাদের নয়। যে কোনও দিনই ঐতিহাসিক দৃষ্টিতে কোনো না কোনো মহাপুরুষের নামের সঙ্গে জড়িয়ে আছে। আগামী দিনগুলিতে আমরা এই সব মহাপুরুষদের স্মরণ করবো, তাঁদের জীবন দর্শন আমরা প্রত্যেক ঘরে পৌঁছে দেবো, আর এর থেকে কিছু না কিছু শেখার চেষ্টা করবো। আমি আরেকবার অনুরোধ করছি যে, ২-রা অক্টোবর থেকে এক মাস খাদি বস্ত্রের উপর বিশেষ ছাড় দেওয়া হয়। এই সুযোগের সদ্ব্যবহার করুন। খাদির সঙ্গে সঙ্গে তাঁত শিল্পকেও সমান গুরুত্ব দেওয়া দরকার। আর এই জন্যই এই দীপাবলিতে আমরা নিশ্চয়ই খাদিকে আমাদের ঘরে জায়গা দেব, খাদিবস্ত্র পরিধান করব। আর দেখুন, গতবার খাদিবস্ত্রের বিক্রি দ্বিগুণ হয়ে গিয়েছিল। কত দরিদ্র মানুষের উপকার হয়েছে। যে কাজ সরকার লক্ষ-কোটি টাকা বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে খরচ করেও করতে পারে না, সেই কাজ আপনাদের ক্ষুদ্র সাহায্যে সম্ভব হয়েছে। প্রিয় দেশবাসী, একটি বিষয় আমার মন আনন্দে ভরিয়ে দিয়েছে। আমার মনের ইচ্ছা, আপনারাও এই আনন্দের শরিক হন। ওঁর ভ্রাতুষ্পুত্র চন্দ্র বসু সব ব্যবস্থা করেছিলেন। সুভাষবাবুর পরিবারের লোকজনের সঙ্গে খোশ মেজাজে বেশ কিছুটা সময় কাটানোর সুযোগ হয়েছিল। আপনারা কল্পনা করতে পারেন এই বিষয়টি আমার জন্য কতটা আনন্দদায়ক। হয়তো তাঁরা সবাই মিলে এই প্রথমবার প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে আসছেন। কিন্তু আমার জন্য সবথেকে বেশি খুশির বিষয় এটাই যে প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে এরকম আতিথেয়তা করার সুযোগ কখনই আসেনি, যে সুযোগ অক্টোবর মাসে আমি পাব। সুভাষবাবুর পরিবারের ৫০ জনেরও অধিক সদস্য, যাঁর বিভিন্ন দেশে থাকেন, তাঁরা সবাই আসছেন। আমার কাছে এটা বড়ই আনন্দঘন মুহূর্ত। আমি ওঁদের স্বাগত জানানোর জন্য আগ্রহী, খুব আনন্দ অনুভব করছি। উনি বলেছেন, “আমার নাম ভার্গবী কান্‌ড়ে। আজ আমাদের নির্বাচন কমিশন কেবলমাত্র নির্বাচন পরিচালক নয়, এক সহায়কের কাজ করছেন, ভোটার-ফ্রেণ্ডলি হয়ে গেছেন, আর তাদের সমস্ত চিন্তাধারা, সমস্ত পরিযোজনার কেন্দ্রবিন্দু হ’ল ভোটদাতা। সময়ে সময়ে ভোটার তালিকা সংশোধনের দিকে আমাদের নজর দিতে হবে। আমি আশা করছি দেশের নব্যযুবকরা ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম নথিভুক্ত না করে থাকলে অবশ্যই তাঁরা তা নথিভুক্ত করবেন এবং অবশ্যই ভোটদান করবেন। আমি তো নির্বাচনের দিন খোলাখুলি বলি ‘প্রথমে ভোটদান, তারপর জলপান’। এটা একটা পবিত্র কর্তব্য, সবারই করা উচিৎ। কিন্তু এত কম বয়সে পদার্থবিদ্যা গবেষণায় তার আগ্রহ আমাকে অবাক করেছে। আমার মনে হয়, ও অনেক পড়াশোনা করে, ইন্টারনেট সার্ফিং করে, বিজ্ঞানের নতুন নতুন ব্যবহার সম্পর্কে অবহিত। রেল দুর্ঘটনা থেকে কীভাবে রেহাই পাওয়া যায়, কী ধরনের প্রযুক্তি দরকার, শক্তির খরচ কীভাবে কম করা যায়, রোবটের অনুভূতি কীভাবে আসে ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সে কথা বলছিল। সত্যিই আশ্চর্যজনক ছেলে। ওর কথাবার্তা সূক্ষ্মভাবে বিচার করতে পারিনি। কিন্তু তার আত্মবিশ্বাস, তার আগ্রহ দেখার মতো এবং আমিও চাই, আমাদের দেশের ছাত্র-ছাত্রীদের বিজ্ঞানের প্রতি আকর্ষণ বাড়া দরকার। এটা সরল মনে জিজ্ঞাসা করা দরকার। এরকমই একজন সোনম্‌ প্যাটেল নামে এক ছোটো বালিকার সঙ্গে সাক্ষাৎ হয়েছে। সোনমের বয়স ন’বছর। আমি তার বাবাকে জিজ্ঞেস করাতে উনি বললেন, পাঁচ বছর বয়স থেকেই মেয়েটি এই কাজ করছে। আমি সত্যিই অভিভূত। সন্দীপজী, আপনারা আমাকে দিয়ে আর কি কি করাবেন? মাসে একবার এই অনুষ্ঠান করার জন্য আমাকে অনেক চেষ্টা করে সময় বের করতে হয়। কখনও কখনও আমাদের আকাশবাণীর বন্ধুদের আধঘণ্টা, পৌনে এক ঘণ্টা আমার জন্য অপেক্ষা করে বসে থাকতে হয়। কিন্তু আমি আপনার এই ভাবনাকে সম্মান জানাই। আপনারা জানেন, সুভাষবাবু রেডিওর কতটা সদ্‌ব্যবহার করতেন? জার্মানি থেকে উনি নিজের রেডিও সম্প্রচার শুরু করেছিলেন, আর রেডিওর মাধ্যমে ভারতবর্ষের জনগণকে স্বাধীনতার আন্দোলন সম্বন্ধে বারবার বলতেন। সাপ্তাহিক সংবাদ বুলেটিন দিয়ে উনি আজাদ হিন্দ রেডিও-র সূচনা করেছিলেন। আপনাদের কথা শুনি, আপনাদের জন্য ভাবি, আপনাদের প্রস্তাব বিবেচনা করি, আর তার থেকেই আমার চিন্তাধারার দিগন্ত খুলে যায়, যা আকাশবাণীর মাধ্যমে আপনাদের কাছে পৌঁছায়। আমি বলি, কিন্তু এটা আসলে আপনাদেরই কথা, আর এতেই আমার সন্তুষ্টি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার কর্ণাটকের তপশিলি উপজাতির(এস.টি.) তালিকায় ৩৮ নম্বর স্থানে ‘নায়কা ’র সমার্থক হিসেবে ‘পরিবারা ও তলোয়ারা ’ সম্প্রদায়কে যুক্ত করার জন্যনীতিগতভাবে অনুমোদন দিল| ফিকি-র তরুণমহিলা সংগঠনের ২৫ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল বৃহস্পতিবার এখানে এক সাক্ষাৎকারে মিলিতহয়প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। মহিলাদের শিল্পোদ্যোগ প্রচেষ্টা এবংনারী ক্ষমতায়ন সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিনিধিরা আলোচনা করেন প্রধানমন্ত্রীরসঙ্গে। প্রতিনিধিদলেরসদস্যদের বিভিন্ন প্রশ্ন ধৈর্য ধরে শোনার পর শ্রী মোদী বিশদভাবে সেগুলির উত্তরওদেন। মঞ্চে উপবিষ্ট শ্রদ্ধেয় বিশিষ্টজন আজকের এই শুভ ও পবিত্র মুহূর্তে আমি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদনকরি আম্মাকে। সর্বশক্তিমান তাঁকে সুস্বাস্থ্য ও দীর্ঘায়ু দান করুন এই প্রার্থনাজানাই। কোটি কোটি ভক্তবৃন্দের কাছে তিনি এক আলোকবর্তিকা স্বরূপ। শুধু তাই নয়, অনেকভক্তের কাছেই তিনি হয়ে উঠেছেন প্রাণশক্তির সমার্থক। আসল ও প্রকৃত মায়ের মতোইপ্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে তাঁর দৃশ্য ও অদৃশ্য হাত দিয়ে যত্ন ও লালন করে চলেছেন তিনি । আম্মার আশীর্বাদ ও নিঃশর্ত ভালোবাসায় যাঁরা ধন্য হয়েছেন,আমি তাঁদের মতোই একজন ভাগ্যবান ব্যক্তি । তিনবছর আগে আম্মার ষাটতম জন্মদিনের অনুষ্ঠানে অমৃতপুরীতে উপস্থিত থাকার সুযোগ আমারহয়েছিল। আজ যদিও এই দিনটির উদযাপন অনুষ্ঠানে সশরীরে উপস্থিত থাকার সৌভাগ্য আমার হয়নি,তা সত্ত্বেও প্রযুক্তির সাহায্যে তাঁকে অভিনন্দন জানাতে পেরে আমি আনন্দিত। ভারতবর্ষ হ’ল এমন কিছু সাধু-সন্তের দেশ, যাঁরাদৃষ্টিগ্রাহ্য ‘সমস্ত কিছু’র মধ্যেই ঈশ্বরের উপস্থিতি উপলব্ধি করেছেন। এই ‘সমস্তকিছু’র মধ্যে সর্বাপেক্ষা বেশি প্রতীয়মান মানবজাতি। এই কারণেই মানবজাতির সেবা হ’লতাঁদের জীবনের মূল মন্ত্র। আমি শুনেছি যে, আম্মা তাঁর শৈশবে নিজের খাবার অন্যকেদান করাকে প্রিয় বলে মনে করতেন। বৃদ্ধ ও অশক্ত মানুষদের সেবা এবং দরিদ্র মানুষদেরসাহায্য করা ছিল তাঁর আবাল্যপালিত এক আবেগ ও অনুভূতি। ভগবান শ্রীকৃষ্ণের পূজাও তিনি করতেন তাঁর শৈশবে। এই দুটি গুণই হয়ে উঠেছে তাঁর শক্তির উৎস। ঈশ্বরের প্রতি ভক্তিএবং দরিদ্রনারায়ণের সেবার বার্তা আমি ব্যক্তিগতভাবে লাভ করেছি আম্মার সান্নিধ্যেএসে। বিশ্বের কোটি কোটি ভক্তজন এই মত ও পথে বিশ্বাস করেন। আম্মা পরিচালিত বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ও কর্মসূচির মধ্যদিয়ে যে সমস্ত সমাজসেবা ও দাতব্য কাজকর্ম করা হয়, সে সম্পর্কেও আমি অবগত। জল, পরিচ্ছন্নভাবে জীবনযাপন, স্বাস্থ্য, শিক্ষা ওবাসস্থান – এই ক্ষেত্রগুলিতে যে সমস্ত দানধ্যান ও কল্যাণমূলক কাজকর্ম করা হয়, আমিবিশেষভাবে উল্লেখ করব সেই বিষয়গুলিই। এর আওতায় যাঁরা উপকৃত হয়েছেন, তাঁদের মধ্যেকয়েকজনকে আজ এখানে শংসাপত্র দেওয়া হবে বলেও আমি জানতে পেরেছি। আজ পর্যন্ত সারা রাজ্যে আম্মার আশ্রমের তত্ত্বাবধানে সম্পূর্ণ হয়েছে ২হাজার শৌচাগার নির্মাণের কাজ। পরিবেশ সংরক্ষণ এবং তা নিরন্তরভাবে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হ’লঅন্যান্য আর সমস্ত কাজকর্মের মধ্যে একটি মাত্র উদাহরণ বিশেষ। মাত্র এক বছর আগে‘নমামি গঙ্গে’ কর্মসূচিতে আম্মা উদারভাবে দান করেছেন ১০০ কোটি টাকা। প্রাকৃতিকবিপর্যয়ের কারণে দুঃখ-দুর্দশা লাঘব করতে আম্মা সকল সময়ে এগিয়ে এসেছেন তাঁরসাহায্যের হাত নিয়ে। খুবই খুশির খবর যে, বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন সমস্যাগুলিরমোকাবিলায় নতুন নতুন পথ ও উপায় উদ্ভাবন করছেন অমৃতা বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা। পরিশেষে, এই উদযাপনের দিনটিতে অংশগ্রহণের সুযোগ দেওয়ারজন্য আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাই। এই চুক্তির ফলে উভয় দেশের নাগরিকরা উপকৃত হবেন। খরচের কিছু অংশ ইউরোপীয় বিনিয়োগ ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ হিসেবে পাওয়া যাবে। ১)চিকিত্সক, মেডিক্যাল আধিকারিক, অন্যান্য স্বাস্থ্য পেশাজীবী এবং বিশেষজ্ঞদেরআদানপ্রদান; ২)মানবসম্পদ, স্বাস্থ্য পরিষেবার উন্নয়নে এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষা সুবিধা নির্মাণেসহায়তা; ৩)স্বাস্থ্যক্ষেত্রে মানবসম্পদের স্বল্পকালীন প্রশিক্ষণ; ৪)ফার্মাসিউটিক্যাল ও মেডিক্যাল যন্ত্রপাতিতে নিয়ন্ত্রণ এবং তথ্যের আদানপ্রদান; ৫) ওষুধশিল্প এবং দুই পক্ষের চিহ্নিত অন্যান্য বিষয়ে বানিজ্য উন্নয়নের সুযোগে সহায়তা; ৬) জেনেরিকএবং আবশ্যিক ওষুধের সংগ্রহ এবং ওষুধ সরবরাহে সহায়তা; ৭)স্বাস্থ্য যন্ত্রপাতি এবং ওষুধ সগ্রহ; ৮)সহযোগিতার অন্য আরও ক্ষেত্র যা উভয়পক্ষের পারস্পরিক সিদ্ধান্তে স্থিরীকৃত হতেপারে| আর্থিক ক্ষেত্রের সি.ই.ও.’দের সঙ্গে গোলটেবিল বৈঠক আর্থিক ক্ষেত্রের শীর্ষস্থানীয় মার্কিন সি.ই.ও.’দের সঙ্গে বৃহস্পতিবার এক গোলটেবিল বৈঠকে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। গত ১৫ মাসে দেশের বিভিন্ন ক্ষেত্রে অর্থনৈতিক সাফল্যের বিশেষ বিশেষ দিকগুলি প্রধানমন্ত্রী তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন। স্থলসীমান্ত চুক্তি রূপায়ণের অগ্রগতির বিষয়টিতে তাঁরা উভয়েই সন্তোষ প্রকাশ করেন। যোগাযোগ, সংযোগ ও পরিকাঠামো, উন্নয়নের লক্ষ্যকে নিরন্তর রাখা, রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার এবং আন্তর্জাতিক অন্যান্য বিষয় সম্পর্কে তাঁরা মনবিনিময় করেন। সেন্ট ভিনসেন্ট অ্যান্ড গ্রেনাডাইন্সের প্রধানমন্ত্রী ডঃ রালফ্ গনজালভেস-এর সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কারের বিষয়টিকে সমর্থন জানানোর জন্য তিনি ডঃ গনজালভেস’কে ধন্যবাদ জানান। গুয়ানার প্রেসিডেন্ট মিঃ ডেভিড গ্র্যাঙ্গার-এর সঙ্গেও মতবিনিময় করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। গুয়ানায় তথ্য প্রযুক্তি ক্ষেত্রে উৎপাদন ক্ষমতা বৃদ্ধিতে সহায়তার জন্য ভারতের ভূয়সী প্রশংসা করেন মিঃ গ্র্যাঙ্গার। মিঃ মাইকেল ব্লুমবার্গ-এর সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক ‘স্মার্ট সিটি’ কর্মসূচিতে সমর্থন ও সহায়তাদানের জন্য মিঃ ব্লুমবার্গ-এর প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। সি.ই.ও.’দের সঙ্গে মতবিনিময় প্রধানমন্ত্রীর অর্থনৈতিক বিকাশ সম্পর্কে দৃষ্টিভঙ্গী এবং গত ১৫ মাসে ভারতের অগ্রগতির বিশেষ প্রশংসা করেন সি.ই.ও.’রা। স্বচ্ছ ও দায়িত্বশীল প্রশাসনিক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে তাঁর সরকার যে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ সে কথা সি.ই.ও.’দের সামনে তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রী। নয়াদিল্লি, ১১ এপ্রিল, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলের (সম্পূর্ণ নাম জ্যোতিরাও গোবিন্দরাও ফুলে, ১১ই এপ্রিল ১৮২৭ – ২৮ নভেম্বর ১৮৯০) জন্মবার্ষিকীতে তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, মহাত্মা জ্যোতিবা ফুলে সমাজের শিক্ষা ও সমাজ সংস্কারের মাধ্যমে সমাজের অনুন্নত অংশের মানুষের উন্নতির জন্য আজীবন চেষ্টা করে গেছেন। তাঁর জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আয়কর দপ্তরের সুসংবদ্ধ ই-ফাইলিং এবং কেন্দ্রীয় প্রসেসিং সেন্টার ২.০ প্রকল্প রূপায়ণের জন্য ৪ হাজার ২৪১ কোটি ৯৭ লক্ষ টাকা ব্যয়ের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে। এছাড়াও, মন্ত্রিসভা ২০১৮-১৯ অর্থবর্ষ পর্যন্ত বর্তমান কেন্দ্রীয় প্রসেসিং সেন্টার – ইনকাম ট্যাক্স রিটার্ন (সিপিসি – আইটিআর) ১.০ প্রকল্প খাতে ১ হাজার ৪৮২ কোটি ৪৪ লক্ষ টাকা খরচের বিষয়েও সম্মতি দিয়েছে। এছাড়াও, সব শ্রেণীর করদাতাদের দাখিল করা রিটার্নগুলির প্রসেসিং – এর ক্ষেত্রে একই ধরণের সমতা আসবে। করদাতাদের আর্থিক অবস্থা নির্বিশেষে করের হিসাব-নিকাশে আরও স্বচ্ছতা সুনিশ্চিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি তুরস্কের আন্টালায় অনুষ্ঠিত জি-২০ শিখর সম্মেলনের পার্শ্ব কর্মসূচিতে অস্ট্রেলিয়ার প্রধানমন্ত্রী ম্যালকম টার্নবুল-এর সাথে বৈঠক করেন| উভয় প্রধানমন্ত্রী ভারত অস্ট্রেলিয়ার মধ্যে অসামরিক পরমানু চুক্তির প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ার কথা ঘোষণা করেছেন। প্রশাসনিক ব্যবস্থাদি সহ চুক্তির ওই প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ হওয়ায় ভারত-অস্ট্রেলিয়া অসামরিক পরমানু চুক্তি কার্যকর হওয়ার পথে এগুবে। ম্যালকম টার্নবুলকে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদি ধন্যবাদ জানান এবং পরমানু চুক্তিটিকে মাইলস্টোন হিসাবে অ্যাখ্যা দেন এবং বিশ্বাস ও আস্থার উৎস বলে অভিহিত করেন। আসিয়ান-ভারত স্মারক শীর্ষ বৈঠকের ২৫তম বর্ষপূর্তিউদযাপনের প্রাক্কালে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পৃথক পৃথক ভাবে কয়েকটিদ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হলেন মায়ানমারের স্টেট কাউন্সিলর দাও আঙ্গ সান সু কি,ভিয়েতনামের প্রধানমন্ত্রী মিঃ নগুয়েন জুয়ান ফুক এবং ফিলিপিন্সের প্রেসিডেন্ট মিঃরডরিগো রোয়া দুতার্তের সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ১০ই মার্চ ২০১৯-এ গাজিয়াবাদ কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তা বাহিনী সিআইএসএফ-এর প্রতিষ্ঠা দিবসের সুবর্ণজয়ন্তী অনুষ্ঠানে যোগ দেবেন। এই উপলক্ষ্যে গাজিয়াবাদের ইন্দিরাপুরমে ৫ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের ক্যাম্পে এক অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী বাহিনীর কুচকাওয়াজ প্রত্যক্ষ করবেন। তিনি ভালো কাজের স্বীকৃতি হিসেবে পুলিশ এবং ফায়ার সার্ভিস পদক প্রদান করবেন। প্রধানমন্ত্রী শহীদ স্মৃতিতে পুস্পস্তবক অর্পণ করবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মার্কিন প্রেসিডেন্ট মিঃ বারাক ওবামার সঙ্গে নিউইয়র্ক শহরে সাক্ষাৎ করেন। তিনি ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট মিঃ ফ্রান্সোয়া হোলন্দ এবং ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী মিঃ ডেভিড ক্যামেরোনের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন। আবহাওয়া পরিবর্তন, সন্ত্রাসবাদ, চারটি রপ্তানি নিয়ন্ত্রণ শাসন ব্যবস্থায় সদস্যপদ পাওয়ার ভারতের ইচ্ছা এবং রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পর্ষদের সংস্কার – এই চারটি বিষয়ে বৈঠকে আলাপ-আলোচনা হয়। আবহাওয়া পরিবর্তন সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য এই বিষয়ে ভারতের দায়বদ্ধতা সর্বাগ্রে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গুরুত্ব কেবল নিঃসারণের মাত্রার ওপর দেওয়া শ্রেয় নয় গুরুত্ব অতএব দিতে হবে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে পরিচ্ছন্ন শক্তি প্রদানের জন্য অর্থ ও প্রযুক্তি দেওয়াতেও। এ প্রসঙ্গে তিনি আগামীতে ১৭৫ গিগাওয়াট পুনর্নবীকরণ শক্তি যোগানোর ভারতের ভবিষ্যৎ চিন্তাভাবনার কথাও উত্থাপান করেন। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রী মিঃ ডেভিড ক্যামেরোন সঙ্গে বৈঠকে শ্রী মোদী ভারতের ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিতে ব্রিটেন’কে অংশীদার হওয়ার আহ্বান জানান। ফরাসী প্রেসিডেন্ট মিঃ ফ্রান্সোয়া হোলন্দ-এর সঙ্গে কথপোকথনের সময় মাইক্রোসফ্ট-এর সহ-প্রতিষ্ঠাতা বিল গেট্স সেখানে উপস্থিত হন। মার্কিন প্রেসিডেন্টের সঙ্গে বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ অগ্রগতি দু’দেশই স্বীকার করে নেয়। সাম্প্রতিক পরিকল্পিত এবং বাণিজ্যিক আলোচনা এবং সাইবার নিরাপত্তার বিষয় দুটিও কথা প্রসঙ্গে উত্থাপন করা হয়। তাঁরা উভয়েই আলোচনা করেন যে, আমেরিকার চারটি উপগ্রহ ইসরো সফলভাবে উৎক্ষেপণের দিনটিতে তাঁরা মিলিত হয়েছেন। রিয়াধে মহিলাদের তথ্যপ্রযুক্তি কেন্দ্র এবং টাটা কনসালটেন্সি সার্ভিসেস (টি সি এস)-এর আই টি ই এস কেন্দ্রটি রবিবার পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রী মোদী বলেন, আজকের এই প্রতিযোগিতামূলক দুনিয়ায় সর্বোচ্চ অগ্রগতির লক্ষ্যে আমাদের উচিত প্রকৃতি ও মানবশক্তির মধ্যে ঘনিষ্ঠ মেলবন্ধন করে তোলা। নারীশক্তি যখন উন্নয়নের যাত্রাপথে আমাদের সঙ্গী হয়ে ওঠে তখন উন্নয়ন তথা প্রগতি এক নতুন মাত্রা লাভ করে। এই কেন্দ্রটিতে তিনি আজ যে কাজের পরিবেশ গড়ে উঠতে দেখেছেন, তা বিশ্বের এক ইতিবাচক শক্তিরই প্রতীক। মহিলা তথ্যপ্রযুক্তি কর্মীদের ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের এই সফর ভারতে বিশেষ উৎসাহ-উদ্দীপনা সঞ্চার করবে। এ মাসের শেষের দিকে পরমাণু সরবরাহকারী দেশগুলির মিলিত গোষ্ঠীর পূর্ণাঙ্গ সম্মেলনে ভারতের এই অন্তর্ভুক্তির আবেদনকে সমর্থন জানানোর জন্য গোষ্ঠীভুক্ত সবক’টি দেশের কাছে আবেদন জানিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র। নতুন দিল্লিতে ওয়াই ৪ ডি নিউ ইন্ডিয়া কনক্লেভে আজ ভাষণ দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ আজ রূপান্তরের মধ্য দিয়ে চলছে। দ্রুততম বিকাশশীল অর্থনীতি হিসাবে ভারত আজ নিজেকে যে প্রতিপন্ন করতে পেরেছে, সে বিষয়টি উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, আন্তর্জাতিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, ভারতে দ্রুতদারিদ্র্য কমছে। তাঁর এও অভিমত, সরকার যখন সক্রিয়তার পরিচয় দিচ্ছে, তখন যুবসমাজ কেবল প্রাপ্ত সুযোগের সদ্ব্যবহারই করছেন না, তাঁরা নতুন করে নিজেদের গড়ে তুলছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, যুবসম্প্রদায়ের আশা-আকাঙ্খা বা ক্ষমতার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ভারত পরিবর্তনশীল ক্রিয়াকলাপগুলি চালাচ্ছে। তিনি বলেন, দেশের ৩ কোটি শিশুর টিকাকরণ সম্ভব হয়েছে, বিগত চার বছরে ১.৭৫ লক্ষ কিমি গ্রামীণ সড়ক নির্মিত হয়েছে, বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে প্রত্যেকটি গ্রামে, ২০১৭-র অক্টোবর থেকে এখন পর্যন্ত ৮৫ লক্ষ বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে গিয়েছে; দরিদ্র মানুষের কাছে পৌঁছে গিয়েছে ৪.৬৫ কোটি রান্নার গ্যাস সংযোগ এবং বিগত চার বছরে ১ কোটিরও বেশি বাড়ি গরিব মানুষের জন্য নির্মাণ করা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, এই বিরাট সংখ্যায় পৌঁছনোর অন্যতম কারণ ভারতের ৮০ কোটি মানুষ বর্তমানে ৩৫ বছরের নীচে রয়েছে। শ্রী মোদী দেশের বহু নেতার উদাহরণ দিয়েছেন যাঁরা অত্যন্ত নগণ্য পটভুমি থেকে উচ্চ পদে আসীন হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিবর্তিত পরিস্থিতি কেবল রাজনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নেই। প্রশাসনিক পরিষেবায় উচ্চপদে অভিষিক্ত বহু যুবকই এসেছেন হয় গ্রাম অথবা ছোট শহর থেকে। হিমা দাস-এর উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই অ্যাথলিটের মতোই অন্যান্য অল্প বয়সী মেয়েরা ক্রীড়া ক্ষেত্র থেকে পদক নিয়ে আসছেন। ভারতমালা, সাগরমালা, মুদ্রা, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া, আয়ুষ্মান ভারত – এর মতো প্রকল্পগুলি কিভাবে সাহায্য করছে তারও ব্যাখ্যা করেন প্রধানমন্ত্রী। উদ্ভাবন ও গবেষণায় যে তাঁর সরকার প্রভূত গুরুত্ব দিয়েছে, তাও এ প্রসঙ্গে জানান তিনি। এর ফলে, সফরের সময়ে যাত্রীরা ভ্রমণের এক নতুন অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবেন। এই ট্রেনের সমস্ত কামরায় অটোমেটিক বা স্বয়ংক্রিয় দরজা, জিপিএস-ভিত্তিক অডিও – ভিজুয়াল যাত্রী তথ্য জ্ঞাপন ব্যবস্থা, বিনোদনের জন্য চলন্ত ট্রেনে হটস্পট ওয়াইফাই ব্যবস্থা ও আরামদায়ক যাত্রী আসন থাকছে। কামরার প্রতিটি শৌচাগারে বায়ো-ভ্যাকুয়াম পদ্ধতি ব্যবহার করা হয়েছে। এমনকি, অতিরিক্ত যাত্রী স্বাচ্ছন্দ্য প্রদানে কামরাগুলিতে তাপ ও শব্দ প্রতিরোধী ব্যবস্থা করা হয়েছে। মাননীয়প্রধানমন্ত্রী অ্যান্টোনিও কোস্টা, বিশিষ্ট প্রতিনিধিবৃন্দ এবং সংবাদমাধ্যমেরসদস্যগণ, গত সপ্তাহে পর্তুগালের বিধ্বংসী দাবানলের যাঁরা শিকার হয়েছেন, প্রথমেই আমি তাঁদের জন্য গভীরশোক ও সমবেদনা প্রকাশ করছি। তাঁদের পরিবার-পরিজনদের মতোই আমরা সমান উদ্বিগ্ন এবংপ্রার্থনা জানাই তাঁদের সকলের সঙ্গেই। আমাদের এইদুটি দেশের মধ্যে রয়েছে এক গভীর ঐতিহাসিক যোগাযোগ, বলিষ্ঠ অর্থনৈতিক সম্পর্ক তথাদু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে এক নিবিড় মৈত্রী বন্ধন । এই কারণেআমি খুবই বিস্মিত বোধ করছি যে এর আগে আর কোন ভারতীয় প্রধানমন্ত্রীই পর্তুগাল সফরেআসেননি। তবে একটি বিষয়ে আমি সন্তোষ অনুভব করছি এই কারণে যে মাত্র ছ’মাসের ব্যবধানেএটি হল ভারত ও পর্তুগালের মধ্যে দ্বিতীয় শীর্ষ বৈঠক। মাত্র স্বল্পকালীনবিজ্ঞপ্তিতে প্রধানমন্ত্রী কোস্টা আমাকে যেভাবে সমাদর ও আন্তরিকতার সঙ্গে স্বাগতজানিয়েছেন, সেজন্য আমি কৃতজ্ঞ তাঁর কাছে। বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তেবসবাসকারী ভারতীয় বংশোদ্ভূতদেরএক শ্রেষ্ঠপ্রতিনিধি হলেন প্রধানমন্ত্রী কোস্টা। প্রধানমন্ত্রীকোস্টার সঙ্গে আজ আমার বহু বিষয়েই আলোচনা হয়েছে। তাঁর বিগত ঐতিহাসিক ভারত সফরেরসময় থেকে শুরু করে এযাবৎকালেরঅগ্রগতিরবিষয়গুলি সম্পর্কেও আমরা পর্যালোচনা করেছি।আমাদের এই অর্থনৈতিক সম্পর্ক উত্তরোত্তর বৃদ্ধি পেতে থাকবে। গত বছর দ্বিপাক্ষিকবাণিজ্যের হার বৃদ্ধি পেয়েছে ১৭ শতাংশ। এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে পর্তুগালেরঅর্থনৈতিক পুনরুজ্জীবন প্রচেষ্টা এবং ভারতের বলিষ্ঠ অগ্রগতি দুটি দেশকে একযোগেএগিয়ে যাওয়ার কাজে প্রচুর সুযোগ-সুবিধা এনে দেবে। বন্ধুগণ, শিল্পোদ্যোগ প্রচেষ্টারক্ষেত্রে ইউরোপের এক উজ্জ্বলতম পরিবেশ-বান্ধব রাষ্ট্র হিসেবে আত্মপ্রকাশ করেছেপর্তুগাল। অন্যদিকে, ভারতও বলিষ্ঠ এবং গতিশীল স্টার্ট আপ শিল্পের একটি পীঠস্থানহিসেবে নিজেকে মেলে ধরতে পেরেছে । মহাকাশ এবং সমুদ্র-বিজ্ঞান – উভয় ক্ষেত্রেই পর্তুগালেরসঙ্গে যৌথ প্রচেষ্টায় আটলান্টিক আন্তর্জাতিক গবেষণা কেন্দ্র গড়ে তোলার জন্য আমরাঅপেক্ষা করে রয়েছি। আমাদেরদু’দেশের জনসাধারণের মধ্যে রয়েছে এক বলিষ্ঠ মৈত্রী সম্পর্ক যা উত্তরোত্তর বৃদ্ধিপেয়ে চলেছে। পর্তুগালে বসবাসকারী ভারতীয়রা আমাদের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে গভীরতরকরে তোলার ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছেন । ফুটবলকেঘিরে পর্তুগালের নাগরিকদের রয়েছে এক বিশেষ উৎসাহ ও উন্মাদনা। এমনকি প্রধানমন্ত্রীকোস্টা নিজেও একজন বড় ফুটবলপ্রেমী। আমাদের দু’দেশের সমাজের মধ্যে যোগসূত্রকে আরওবাড়িয়ে তোলার কাজে এই বিষয়টিও অনুঘটকের কাজ করতে পারে। এছাড়াও, আমাদের সাংস্কৃতিকবন্ধন ক্রমশঃহয়ে উঠেছে নিবিড়তর। লিসবন বিশ্ববিদ্যালয়ে ভারতীয় বিষয় সম্পর্কেপঠনপাঠনের জন্য আমরা এক বিশেষ অধ্যাপকের পদও সৃষ্টি করেছি। বিভিন্ন ভারতীয়চলচ্চিত্রের সাব-টাইটেল অর্থাৎ, উপ-শিরোনাম তৈরি করা হচ্ছে পর্তুগিজ ভাষায়। আমাদেরপারস্পরিক কল্যাণে সংকলিত হচ্ছে হিন্দি-পর্তুগিজ অভিধান। সপ্তদশ শতকে গোয়া ওপর্তুগালের মধ্যে যে সমস্ত চিঠিপত্রের আদানপ্রদান ঘটেছিল, তারই ১২ হাজার নথিসম্বলিত একটি ডিজিটাল সংস্করণ আমাদের সঙ্গে বিনিময়ের জন্য আমি ধন্যবাদ জানাইপর্তুগালকে। কারণ, গুরুত্বপূর্ণ এই পুরাতাত্ত্বিক সংগ্রহ থেকে বিশেষভাবে উপকৃতহবেন আমাদের দু’দেশেরই গবেষকরা। আন্তর্জাতিকমঞ্চেও ভারত ও পর্তুগাল হল একে অপরের ঘনিষ্ঠ সহযোগী। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তাপরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ এবং বহুপাক্ষিক রপ্তানি নিয়ন্ত্রক সংস্থায় ভারতেরঅন্তর্ভুক্তিরবিষয় দুটিকে সমর্থন জানিয়ে যাওয়ার জন্যও আমরা কৃতজ্ঞ পর্তুগালেরকাছে। আপনাদের সকলকে অনেক অনেক ধন্যবাদ। ইন্ডিয়া স্যানিটেশন কনফারেন্স অর্থাৎ ‘ইন্দোসান’-এর আজউদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজধানীতে আয়োজিত এই সম্মেলনেরমূল লক্ষ্য হল, দেশের সার্বিক স্বাস্থ্য পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে আলোচনা ও মতবিনিময়। প্রধানমন্ত্রী তাঁর উদ্বোধনী ভাষণে বলেন, অপরিষ্কার ওঅপরিচ্ছন্ন পরিবেশ কেউই পছন্দ করেন না একথা সত্য, কিন্তু পরিচ্ছন্নতার অভ্যাস গড়েতোলার জন্য প্রয়োজন প্রয়াস ও প্রচেষ্টার। শ্রী মোদী বলেন, পরিচ্ছন্নতা সম্পর্কে শিশুরা ক্রমশসচেতন হয়ে উঠছে। এ থেকেই প্রমাণিত যে, স্বচ্ছতা অভিযান দেশের সাধারণ মানুষেরজীবনকে স্পর্শ করেছে। পরিচ্ছন্নতার প্রসারে এক সুস্থ প্রতিযোগিতার বাতাবরণ এখনতৈরি হয়েছে দেশের নগর ও শহরাঞ্চলের মধ্যে। পরিচ্ছন্নতার গুরুত্ব সম্পর্কে জন-সচেতনতা প্রসারের কাজেপ্রচার-মাধ্যমগুলির ইতিবাচক ভূমিকার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরিচ্ছন্নতারবিষয়টি যদি আমার থেকেও অন্য কেউ আরও বেশি করে এগিয়ে নিয়ে গিয়ে থাকে, তবে তা হলমিডিয়া বা প্রচার-মাধ্যম। প্রধানমন্ত্রীর মতে, পরিচ্ছন্নতা হ’ল এমন একটি বিষয়, যারসাফল্য ও বাস্তবায়ন শুধুমাত্র বাজেট বরাদ্দের ওপর নির্ভর করে না। বরং এটি হল এমনএকটি বিষয়, যাকে জন-আন্দোলনের রূপ দেওয়া সম্ভব। ঔপনিবেশিক শাসন থেকে দেশকে মুক্ত করার লক্ষ্যে মহাত্মাগান্ধীর ‘সত্যাগ্রহ’ আন্দোলনের স্মৃতিচারণ করে শ্রী মোদী বলেন, ভারতকেঅপরিচ্ছন্নতা থেকে মুক্ত রাখতে আজকের দিনে প্রয়োজন ‘স্বচ্ছাগ্রহ’। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্জ্য সামগ্রীর পুনর্ব্যবহার ওপুনর্নবীকরণ আমাদের এক দীর্ঘদিনের অভ্যাস। তবে, এই বিষয়টিকে এখন প্রযুক্তিচালিতকরে তোলা প্রয়োজন। শ্রীমতী মাধুরী বসু স্বরচিত ‘দ্য বোস ব্রাদার্স অ্যান্ড ইন্ডিয়ান ইন্ডিপেন্ডেন্স – অ্যান ইনসাইডার্স অ্যাকাউন্ট’ বইটির একটি কপি তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে। বইটির প্রকাশনা সংস্থার পক্ষে শ্রী বিবেক মেহরাও ঐ সময়ে উপস্থিত ছিলেন। “@ ইনভেস্টঝাড়খন্ডেরসাফল্য কামনা করে শুভেচ্ছা জানাই। শীর্ষ সম্মেলনের আলোচনা ও মতবিনিময় ফলপ্রসূ হোকএবং ঝাড়খন্ডের বিকাশ ও অগ্রগতিতে অবদানের দৃষ্টান্ত স্থাপন করুক এই কামনা জানাই। @ ইনভেস্টঝাড়খন্ড-এরমাধ্যমের যে বিনিয়োগের সূচনা হবে, তা ঐ রাজ্যের জনসাধারণের জন্য সুযোগ-সুবিধারপ্রসার ঘটানোর পাশাপাশি তাঁদের আশা-আকাঙ্খার বাস্তবায়নেও সাহায্য করবে বলে আমি আশাকরি। জালিয়ানওয়ালাবাগ হত্যাকাণ্ডের শহীদদের উদ্দেশে আজ শ্রদ্ধা নিবেদন করলেনপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। অভিনেতা কাদের খানের মৃত্যুতে শোকপ্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মার্কিন বিদেস সচিব শ্রী মাইকেল পম্পিও এবং প্রতিরক্ষা সচিব শ্রী জেমস্‌ ম্যাটিস বৃহস্পতিবার নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। তাঁরা দু’জনেই প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীকে মার্কিন রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের শুভেচ্ছা জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রপতি ট্রাম্পের সঙ্গে তার সাক্ষাতের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী দুই মার্কিন সচিবকে তার শুভেচ্ছাও মার্কিন রাষ্ট্রপতিকে জ্ঞাপন করার অনুরোধ জানান। দুই মার্কিন সচিব বৃহস্পতিবার অনুষ্ঠিত অর্থবহ ও গঠনমূলক ২+২ আলোচনা সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী দুই মার্কিন সচিব এবং ভারতের বিদেশ মন্ত্রী ও প্রতিরক্ষা মন্ত্রীকে উভয় দেশের মধ্যে প্রথম ২+২ আলোচনার জন্য অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল, ২৫ ফেব্রুয়ারি, জাতীয় যুদ্ধ স্মারকটিকে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করবেন। অনুষ্ঠানে তিনি প্রাক্তন সেনাকর্মীদের উদ্দেশেও ভাষণ দেবেন। নতুন দিল্লির ইন্ডিয়া গেটের কাছে জাতীয় যুদ্ধ স্মারকটি মাধ্যমে স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে দেশের রক্ষায় জীবনদান করা সৈনিকদের যথাযথভাবে শ্রদ্ধা জানানো হয়। জাতীয় যুদ্ধ স্মারকটি সেই সেনাকর্মীদেরও স্মরণ করায় যাঁরা শান্তিরক্ষা অভিযান ও উগ্রপন্হা বিরোধী কার্যকলাপে অংশ নিয়ে আত্মত্যাগ করেছেন। জাতীয় স্মারকটি প্রাঙ্গনে একটি কেন্দ্রীয় স্মারকস্তম্ভ, একটি সদা-প্রজ্জ্বলিত অগ্নিশিখা এবং ভারতীয় সেনাবাহিনী, বিমানবাহিনী ও নৌবাহিনীর বিখ্যাত যুদ্ধগুলি চিহ্নিত করা ৬টি ব্রোঞ্জের প্রতিমূর্তি রয়েছে। ভারত ও সোয়াজিল্যান্ডের মধ্যে স্বাস্হ্য ও ঔষধি ক্ষেত্রে একটি সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরের বিষয়টিকে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা অনুমোদন করেছে। নেপালের প্রধানমন্ত্রী শ্রী পুষ্প কমল দহল ‘প্রচণ্ড’ মঙ্গলবার দূরভাষে কথা বলেন ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। সংবিধানরূপায়ণের প্রক্রিয়ায় সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকে যুক্ত করার যে প্রচেষ্টা চালাচ্ছে নেপালসরকার, সে সম্পর্কে শ্রী মোদীকে অবহিত করেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী। শান্তি,স্থিতিশীলতা এবং আর্থ-সামাজিক রূপান্তরের লক্ষ্যে নেপালের জাতীয় প্রচেষ্টায় ভারতেরসরকার ও জনসাধারণের পক্ষ থেকে শুভেচ্ছার কথা ব্যক্ত করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী।নেপালের স্থানীয় ও আঞ্চলিক পর্যায়ের নির্বাচনে ভারত সম্ভাব্য সকল ক্ষেত্রেইসহযোগিতা করবে বলে তিনি আশ্বাস দেন পুষ্প কমল দহলকে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী বৃহস্পতিবার সেন্ট পিটার্সবার্গ-এ অষ্টাদশ ভারত-রাশিয়া শীর্ষবৈঠকে মিলিত হলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে। বৃহস্পতিবারেরসেন্ট পিটার্সবার্গ ঘোষণাপত্রকে এক অস্থির অথচ পরস্পর সংযুক্ত এবং পরস্পরনির্ভরশীল বিশ্ব পরিস্থিতিতে এক বিশেষ সুস্থিতির অঙ্গীকার বলে বর্ণনা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রীবলেন, এসপিআইইএফ-এ একটি অতিথি রাষ্ট্র হিসেবে ভারতের অংশগ্রহণ এবং শুক্রবার সেখানেতাঁর ভাষণ দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সহযোগিতার বাতাবরণকে আরও নিবিড় করে তুলবে। এই প্রসঙ্গে কুড়ানকোলাম পরমাণু বিদ্যুৎপ্রকল্পের ৫ ও ৬ নম্বর ইউনিট সম্পর্কিত চুক্তি সম্পাদনের কথা উল্লেখ করেন তিনি। প্রতিরক্ষাউৎপাদনের ক্ষেত্রে যৌথ উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে কামোভ ২২৬ হেলিকপ্টার নির্মাণেরজন্য। সীমান্ত সন্ত্রাস দমনে ভারতকে নিঃশর্ত সমর্থন ও সহযোগিতার যে প্রস্তাবদিয়েছে রাশিয়া তাকেও স্বাগত জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ভারত-রাশিয়াসম্পর্কের প্রসার ও অগ্রগতিতে প্রেসিডেন্ট পুতিনের নেতৃত্বের ভূয়সী প্রশংসা করেনভারতের প্রধানমন্ত্রী। বৃহস্পতিবারভারত ও রাশিয়ার মধ্যে স্বাক্ষরিত হয় পরমাণু শক্তি, রেল, রত্ন ও অলঙ্কার, প্রথাগতজ্ঞান এবং সাংস্কৃতিক বিনিময় সম্পর্কিত পাঁচটি সহযোগিতা চুক্তি। অস্ট্রেলিয়ার বিদেশ মন্ত্রী মিসেস জুলি বিশপ মঙ্গলবার এখানে সাক্ষাৎ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ২০১৭-রএপ্রিলে অস্ট্রেলীয় প্রধানমন্ত্রী মিঃ ম্যালকম টার্নবুলের ভারত সফরের সময়কাল থেকেদ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের প্রসার ও অগ্রগতির দিকগুলি সম্পর্কে সংক্ষেপে শ্রী নরেন্দ্রমোদীকে অবহিত করেন মিসেস জুলি বিশপ। পারস্পরিকস্বার্থ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক বিষয় সম্পর্কেও আলোচনা ওমতবিনিময় করেন শ্রী মোদী এবং মিসেস বিশপ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শনিবার মোহনপুরা জলসেচ প্রকল্পটি উৎসর্গ করেন জাতির উদ্দেশে। এই প্রকল্পটি থেকে রাজগড় জেলার কৃষি জমিতে সেচের সুযোগ সম্প্রসারিত হবে। এছাড়াও, আশেপাশের গ্রামগুলিতে পানীয় জলের যোগান নিশ্চিত করতেও বিশেষ সহায়ক হবে এই প্রকল্পটি। কয়েকটি জল সরবরাহ কর্মসূচিরও এদিন শিলান্যাস করেন প্রধানমন্ত্রী। শিক্ষা, শিল্প নীতি এবং নারী ক্ষমতায়নের মতো ক্ষেত্রগুলিতে ডঃ শ্যামাপ্রসাদ মুখোপাধ্যায়ের অবদানের কথাও এদিন স্মরণ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন যে, ডঃ মুখোপাধ্যায় শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার ওপর সর্বোচ্চ গুরুত্ব স্থাপন করেছিলেন। কেন্দ্রীয় সরকারের দক্ষ ভারত মিশন, স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, মুদ্রা যোজনা এবং মেক ইন ইন্ডিয়ার মতো কর্মসূচিগুলি ডঃ মুখোপাধ্যায়ের স্বপ্ন ও দৃষ্টিভঙ্গির-ই বাস্তব প্রতিফলন। দেশের প্রয়োজন ও চাহিদার কথা মনে রেখে দেশকে একুশ শতকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে কাজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। কৃষি ক্ষেত্রে উল্লেখযোগ্য কাজের দৃষ্টান্ত স্থাপন এবং সেই সঙ্গে উন্নয়ন সংক্রান্ত বিভিন্ন উদ্যোগ গ্রহণের জন্য মধ্যপ্রদেশ সরকারের বিশেষ প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। রাজ্যে সেচসেবিত অঞ্চলের প্রসার ঘটানোর জন্যও রাজ্য সরকারের সপ্রশংস উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, মধ্যপ্রদেশের জলসেচ সম্পর্কিত লক্ষ্যমাত্রা পূরণে রাজ্য সরকারের সঙ্গে সর্বতোভাবে সহযোগিতা করার জন্য সম্পূর্ণ রূপে প্রস্তুত কেন্দ্রীয় সরকার। প্রধানমন্ত্রী কৃষি সিচাঁই যোজনার আওতায় এই রাজ্যে বর্তমানে ১৪টি প্রকল্প রূপায়িত হচ্ছে। অণু সেচ প্রকল্পগুলির ওপর এখন আরও বেশি করে জোর দেওয়া হচ্ছে বলে উল্লেখ করেন তিনি। মাটির স্বাস্থ্য পরীক্ষার কার্ড, ফসল বিমা যোজনা, বৈদ্যুতিন কৃষি বিপণন মঞ্চ ইত্যাদি সহ কৃষি ক্ষেত্রে কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উদ্যোগের কথাও এদিন উঠে আসে প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্যে। নতুন দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৃহস্পতিবারের (৮ই নভেম্বর) বৈঠকে অন্ধ্রপ্রদেশে একটি কেন্দ্রীয় বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের প্রস্তাব অনুমোদিত হয়েছে। অন্ধ্রপ্রদেশ পুনর্গঠন আইন, ২০১৪-র ত্রয়োদশ তপশিলের আওতায় ভিজিয়ানা জেলার রেল্লি গ্রামে এই কেন্দ্রীয় উপজাতি বিশ্ববিদ্যালয়টি স্থাপিত হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী রাজ্যের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে কথা বলেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আজ সকালে কেরলের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী পিনারাই বিজয়নের সঙ্গে আবার কথা হয়েছে। রাজ্যে বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে আমরা আলোচনা করেছি। আমি প্রতিরক্ষা মন্ত্রককে ঐ রাজ্যে ত্রাণ ও উদ্ধারকাজ আরও জোরদার করার নির্দেশ দিয়েছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শ্রী অম্বরীশের প্রয়াণে শোক প্রকাশ করেছেন। বাল গঙ্গাধার তিলক এবং চন্দ্র শেখর আজাদের জন্মবার্ষিকীতে শ্রদ্ধার সঙ্গে তাঁদের স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ কার্গিল দিবসে সৈনিকদের শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, অপারেশন বিজয়ে যেসব নির্ভীক সৈনিক দেশের সেবা করেছেন, তাঁদের কার্গিল দিবসে শ্রদ্ধা জানাচ্ছে সমগ্র দেশ। রামেশ্বরমথেকে অযোধ্যাগামী নতুন এক্সপ্রেস ট্রেন ‘শ্রদ্ধা সেতু’র যাত্রা শুরুর সংকেত দেনপ্রধানমন্ত্রী এক ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে। ‘সবুজ রামেশ্বরম’ প্রকল্পের একটিপ্রচার পুস্তিকা প্রকাশ করা ছাড়াও ৮৭ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের ৯.৫ কিলোমিটার দীর্ঘলিঙ্ক রোডটি একটি ফলকের আবরণ উন্মোচনের মাধ্যমে জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন তিনি।মহাসড়কের এই অংশটি মুকুন্দারিয়ার ক্যাথিরামের সঙ্গে যুক্ত করবে আরিচালমুনাইকে। রামেশ্বরমের সারল্য, গভীরতা এবং শান্ত সমাহিতভাবের প্রতিফলন ঘটেছিল ডঃ কালামেরমধ্যে। শ্রী মোদীবলেন, ডঃ কালামের প্রতি শ্রদ্ধার নিদর্শনস্বরূপ যে স্মারক সংগ্রহশালাটি গড়ে তোলাহয়েছে সেখানে তাঁর জীবন ও সময়কালের উল্লেখযোগ্য মুহূর্তগুলিকে মূর্ত করে তোলাহয়েছে। প্রধানমন্ত্রী এবং সেইসঙ্গে নিম্নলিখিত দপ্তর ও মন্ত্রকগুলির দায়িত্বে: কর্মী, জন-অভিযোগ ও পেনশন পরমাণু শক্তি দপ্তর মহাকাশ দপ্তর গুরুত্বপূর্ণ নীতিসমূহ এবং কোন মন্ত্রীর কাছে বন্টন করা হয়নি এ ধরনের অন্যান্য সমস্ত দপ্তর স্বরাষ্ট্র দপ্তর অর্থ কর্পোরেট বিষয়ক সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক জাহাজ চলাচল জলসম্পদ, নদী বিকাশ এবং গঙ্গার পুনরুজ্জীবন শিল্প ও বাণিজ্য অসামরিক বিমান পরিবহণ পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ সার ও রাসায়নিক পানীয় জল ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা শ্রী রামবিলাস পাসোয়ান ক্রেতা স্বার্থ বিষয়ক, খাদ্য ও গণবন্টন ব্যবস্হা আইন ও বিচার বৈদ্যুতিন ও তথ্য প্রযুক্তি স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ ভারী শিল্প ও রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পোদ্যোগ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প গ্রামোন্নয়ন পঞ্চায়েতি রাজ খনি সংসদ বিষয়ক আদিবাসী বিষয়ক কৃষি ও কৃষক কল্যাণ শ্রী থাওয়ার চাঁদ গেহলত বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ভূ-বিজ্ঞান পরিবেশ, অরণ্য ও জলবায়ু পরিবর্তন শ্রী প্রকাশ জাভড়েকর মানব সম্পদ উন্নয়ন পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস দক্ষতা উন্নয়ন ও শিল্পোদ্যোগ শ্রী পীযূষ গোয়েল শ্রীমতী নির্মলা সীতারমন প্রতিমন্ত্রী (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) পরিকল্পনা (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) সার ও রাসায়নিক শ্রী সন্তোষ কুমার গঙ্গোয়ার শ্রম ও কর্মসংস্থান (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) আয়ুর্বেদ যোগ ও প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতি, ইউনানি, সিদ্ধ ও হোমিওপ্যাথি (আয়ূষ) (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) উত্তর-পূর্বাঞ্চলের উন্নয়ন (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর কর্মী, জন-অভিযোগ ও পেনশন পরমাণু শক্তি দপ্তর মহাকাশ দপ্তর সংস্কৃতি (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) পরিবেশ, অরণ্য ও জলবায়ু পরিবর্তন ক্ষুদ্র, অতিক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্পোদ্যোগ (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) যোগাযোগ (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) রেল ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) তথ্য ও সম্প্রচার (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) বিদ্যুৎ (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) নতুন ও পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) আবাসন ও নগরোন্নয়ন (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) পর্যটন (স্বাধীন দায়িত্বপ্রাপ্ত) শ্রী বিজয় গোয়েল সংসদ বিষয়ক পরিসংখ্যান ও কর্মসূচি রূপায়ণ অর্থ জাহাজ চলাচল ইলেকট্রনিক্স ও তথ্য প্রযুক্তি পানীয় জল ও স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পল্লী উন্নয়ন স্বরাষ্ট্র দপ্তর শ্রী রাজেন গোহাইন শ্রী পুরুষোত্তম রূপালা কৃষি ও কৃষক কল্যাণ পঞ্চায়েতি রাজ আদিবাসী বিষয়ক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প অসামরিক বিমান পরিবহণ ভারী শিল্প রাষ্ট্রায়ত্ত শিল্পোদ্যোগ সংসদ বিষয়ক জলসম্পদ, নদী বিকাশ এবং গঙ্গার পুনরুজ্জীবন কৃষি ও কৃষক কল্যাণ সড়ক পরিবহণ ও মহাসড়ক জাহাজ চলাচল সার ও রাসায়নিক ক্রেতা স্বার্থ বিষয়ক, খাদ্য ও সরকারি বন্টন বাণিজ্য ও শিল্প আইন ও বিচার কর্পোরেট বিষয়ক প্রতিরক্ষা মানব সম্পদ উন্নয়ন জলসম্পদ, নদী বিকাশ এবং গঙ্গার পুনরুজ্জীবন পরিচ্ছন্নতা অভিযানের ক্ষেত্রে বিশেষ সাফল্য দেখানোর জন্য ঝাড়খন্ড, মহারাষ্ট্র এবং ছত্তিশগড়েরও বিশেষ প্রশংসা করেন তিনি। স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ক্ষেত্রে এ পর্যন্ত অর্জিত সাফল্য ও অগ্রগতির কথাও এদিন উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বিশেষ আশা প্রকাশ করে বলেন যে, আগামী বছর মহাত্মা গান্ধীর সার্ধশত জন্মবার্ষিকীকালে তাঁর স্বপ্ন বাস্তবায়িত হতে চলেছে। নাগরিক পরিকাঠামোর আধুনিকীকরণের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রচেষ্টার কথাও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। স্বচ্ছ ভারত মিশন ছাড়াও, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (শহরাঞ্চল), স্মার্ট নগরী প্রকল্প, অম্রুত, শহরাঞ্চলের জন্য দীনদয়াল জাতীয় জীবিকা মিশন ইত্যাদিরও উল্লেখ ছিল প্রধানমন্ত্রীর ভাষণে। ভারতের প্রথম স্মার্ট নগরী নয়া রায়পুরে কয়েকদিন আগে এক সুসংবদ্ধ নির্দেশ ও নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্রের উদ্বোধন করে এসেছেন বলে জানান তিনি। শ্রী মোদী বলেন যে, এই ধরণের কর্মসূচি বর্তমানে রূপায়িত হচ্ছে মধ্যপ্রদেশের ৭টি শহরে। মধ্যপ্রদেশে নগরোন্নয়ন সম্পর্কিত অন্যান্য যে সমস্ত প্রকল্পের কাজ চলছে, তারও উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী জানান যে, এই রাজ্যের ১ লক্ষেরও বেশি মানুষ তাঁদের একটি করে নিজস্ব বাসস্থানের সুযোগলাভ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে সকলের জন্য বাসস্থান গড়ে তোলার লক্ষ্য পূরণে নিরলসভাবে কাজ করে চলেছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত চার বছরে ১ কোটি ১৫ লক্ষের মতো বাসস্থান ইতিমধ্যেই নির্মিত হয়েছে এবং আগামী ২০২২ সালের মধ্যে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা পূরণে আরও প্রায় ২ কোটি বাসস্থান নির্মাণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা যে কর্মসংস্থান ও নারী ক্ষমতায়নের পথ প্রশস্ত করেছে – একথারও উল্লেখ করেন তিনি। সংস্থাটি পরিচালনার দায়িত্ব কেন্দ্রীয় সামাজিক ন্যায়বিচার ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রকের অধীন প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের ক্ষমতায়ন সংক্রান্ত দপ্তর পালন করবে। নয়াদিল্লির ‘ইনস্টিটিউট ফর ফিজিক্যালি হ্যান্ডিক্যাপড’-এ প্রাথমিকভাবে এই কেন্দ্রটি গড়ে তোলা হবে। সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে দেশের প্রায় ৫০ লক্ষ শ্রবণ প্রতিবন্ধী মানুষ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র ও অন্যান্য দৈনন্দিন কাজকর্মেও এই কেন্দ্রটি শ্রবণ প্রতিবন্ধীদের অংশগ্রহণের সুযোগ বাড়াতে সাহায্য করবে। সংস্থার একজন সভাপতি ছাড়াও সাধারণ পরিষদে ১২ জন সদস্য থাকছেন। প্রস্তাবিতচুক্তির আওতায় কাঠামোগত এক বিশেষ আইনি ব্যবস্থা থাকবে যার সাহায্যে সন্ত্রাসবাদী,অর্থনৈতিক অপরাধী এবং অন্যান্য অপরাধীদের চিহ্নিত করে তাদের বিচারের জন্য ভারত ওলিথুয়ানিয়া পরস্পরের দেশে প্রত্যার্পণ করতে পারবে। আগামী পাঁচবছরের শেষে এনসিসি’র ৭৫তম বর্ষপূর্তি উদযাপন, তাই পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্যকার্যপরিকল্পনা সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষেরই স্থির করা প্রয়োজন বলে মনে করেনপ্রধানমন্ত্রী। ভারতের বর্তমান যুব সমাজ যে দুর্নীতিকে কোনও ভাবেই মেনে নেবে না, একথাবিশেষ দৃঢ়তার সঙ্গে ব্যক্ত করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তিনি বিশেষ জোর দিয়ে বলেন যে,দুর্নীতি ও কালো টাকার বিরুদ্ধে লড়াই অহরহ চলতেই থাকবে। কারণ, এই যুদ্ধের সঙ্গেজড়িয়ে রয়েছে ভারতের তরুণ ও যুব সমাজের ভবিষ্যৎ। ভীম অ্যাপ-এর সাহায্যে ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেনদেনের কাজকর্মকে উৎসাহ দিতেউদ্যোগী হওয়ার জন্য এনসিসি সদস্যদের কাছে আর্জি জানান প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেনযে, এই পদক্ষেপ স্বচ্ছতা ও দায়বদ্ধতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে। ভারতের যুব সমাজযদি স্থিরপ্রতিজ্ঞ হয়, তা হলে কোনও কিছুই যে অসম্ভব নয় – একথা বিশেষ জোরের সঙ্গেব্যক্ত করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগে লোকের বিশ্বাস ছিল যে, ধনী ও ক্ষমতাবানরা সবকিছুরঊর্ধ্বে। কিন্তু এই পরিস্থিতির বর্তমানে পরিবর্তন ঘটেছে। তিনি বলেন, আধারভারতের বিকাশ প্রচেষ্টায় এক বিশেষ শক্তি জুগিয়েছে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার বিচারসংক্রান্তসহযোগিতার ক্ষেত্রে ভারত ও জিম্বাবুয়ের মধ্যে সমঝোতা স্মারক (মউ) স্বাক্ষরেরঅনুমোদন দিল| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ভারতের রাষ্ট্রপতি পদে শ্রী রামনাথ কোবিন্দের কার্যকালের মেয়াদের বর্ষপূর্তিতে তাঁকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। ব্রিক্‌স রাষ্ট্রগুলির মধ্যে বিজ্ঞান, প্রযুক্তি ও উদ্ভাবন সংক্রান্ত সহযোগিতা প্রসারের উল্লেখ রয়েছে সম্পাদিত মউটিতে। দীর্ঘকাল ধরেই ভারত ও ভুটানের মধ্যে রয়েছে কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক সম্পর্কের এক নিবিড় বন্ধন। ২০০৭ সালে নয়াদিল্লিতে স্বাক্ষরিত ভারত-ভুটান মৈত্রী চুক্তিটি এই দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও জোরদার করে তুলেছে। ভারত-ভুটান মৈত্রী চুক্তির ২,৭ ও ৮ ধারার আওতায় এই মউটি স্বাক্ষরিত হবে। নাগাল্যান্ড গাঁও বুড়া ফেডারেশনের ১৫ সদস্যের এক প্রতিনিধিদল আজ এখানেসাক্ষাৎ করে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ঐ রাজ্যের সবকটি নাগাগ্রামের প্রধানদের নিয়ে গঠন করা হয় এই গাঁও বুড়া ফেডারেশন। খেলোয়াড়দেরসঙ্গে আলাপচারিতাকালে এই বিশেষ সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানিয়ে প্রধানমন্ত্রীভবিষ্যতে তাঁদের আরও বড় ধরণের সাফল্য কামনা করেন। নিজেদেরস্বাক্ষরিত একটি ব্যাট প্রধানমন্ত্রীকে উপহার দেন ক্রিকেট দলের সদস্যরা।প্রধানমন্ত্রীর হাতে তাঁরা তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর নাম লেখা একটি বল ও জার্সিও। ‘ভারত-কানাডা : যৌথ বিষয়’ সম্পর্কিত দুটি স্মারক ডাকটিকিটের একটি সেট মিলিতভাবেপ্রকাশের জন্য সম্মতি জানিয়েছে ভারত ও কানাডা – এই দুটি দেশ। ‘দিওয়ালি’ – এইবিষয়টির ওপর স্মারক ডাকটিকিটের এই সেটটি প্রকাশ করা হবে এ বছর ২১ সেপ্টেম্বরতারিখে। দু’দেশের নাগরিকদের মধ্যে মৈত্রী সম্পর্ক এবং ভারতীয়বংশোদ্ভূতদের এক বিরাট অংশ কানাডায় বসবাস করার ফলে দু’দেশের সম্পর্কের বনিয়াদ ক্রমশঃদৃঢ় হয়ে উঠেছে। স্বাস্হ্যবিধান, স্মার্ট সিটি, যোগাযোগ ব্যবস্হা, বিদ্যুৎ, আবাসন ও অন্যান্য ক্ষেত্রে এই প্রকল্পগুলি রূপায়িত হবে। উত্তরপ্রদেশের রাজ্যপাল শ্রী রাম নায়েক, রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রী যোগী আদিত্যনাথ ও অন্যান্য বিশিষ্ট ব্যক্তিরাও অনুষ্ঠানে উপস্হিত ছিলেন। বারাণসীর নিকটবর্তী আওরে গ্রামে একটি জনসভার ভাষনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার উন্নয়নে গতি আনতে দুটি উপায়ে কাজ করছে। প্রথম পদ্ধতিতে মহাসড়ক, রেল ইত্যাদির মতো পরিকাঠামো গঠন, অন্য উপায়ে উন্নয়নের সুযোগ-সুবিধা সাধারণ মানুষের কাছে পৌঁছনোর বিষয়টি সুনিশ্চিত করা। তিনি আরও বলেন, এই লক্ষ্যপূরণের জন্য বাজেটে বেশকিছু ঘোষনা করা হয়েছে। আজকের অনুষ্ঠানে উন্মোচিত প্রকল্পগুলির সম্বন্ধে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বারাণসীকে নতুন ভারতে একটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র হিসেবে গড়ে তোলার জন্য এই উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। এই প্রসঙ্গে তিনি উল্লেখ করেন যে বারাণসীর ডিজেল ও লোকোমোটিভ ওয়ার্কস-এ আজ একটি লোকোমোটিভ ট্রেনের যাত্রা সূচনা করা হয়েছে এবং তিনি বলেন, মেক ইন ইন্ডিয়ার আওতায় এই উদ্যোগটি ভারতীয় রেলের ক্ষমতা সম্প্রসারণ ও গতি বৃদ্ধি করতে সাহায্য করবে। তিনি বলেন, গত সাড়ে চার বছরে রেলকে রূপান্তরিত করতে বহু পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে এবং ভারতের প্রথম সেমি হাইস্পিড ট্রেন, বন্দে ভারত এক্সপ্রেস যেটি দিল্লী-বারাণসী রুটে চলবে, তেমনই একটি পদক্ষেপ। তিনি বলেন, এই প্রকল্পগুলি কেবল পরিবহন ব্যবস্হাকে সহজতর করে তুলবে না, বরং বারাণসী, পূর্বাঞ্চল ও পার্শ্ববর্তী এলাকাগুলিতে নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণে সহায়ক হবে। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন প্রকল্পে সুবিধাভোগীদের শংসাপত্র দেন। আইআইটি বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের শতবর্ষ পেরোনোর বিষয়ে একটি স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশও করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বেনারস হিন্দু বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যানসার কেন্দ্র এবং লেহেরতারার ভাবা ক্যানসার হাসপাতাল বিহার, ঝাড়খন্ড, ছত্তিশগড় ও অন্যান্য পার্শ্ববর্তী রাজ্যগুলি থেকে আসা রোগীদের আধুনিক চিকিৎসা ব্যবস্হা প্রদান করবে। আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের বিষয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উত্তরপ্রদেশে প্রায় ৩৮ হাজার মানুষ এই প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, উত্তরপ্রদেশে প্রায় ১ কোটি ২০ লক্ষ পরিবার এই প্রকল্প থেকে সুবিধাপ্রাপ্ত হবে। তিনি প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নীধি যোজনার বিষয়েও বক্তব্য রাখেন এবং বলেন, এটি উত্তরপ্রদেশের প্রায় ২ কোটি ২৫ লক্ষ দরিদ্র কৃষককে উপকৃত করবে। গরু ও বাছুরদের সংরক্ষণ, রক্ষা ও বিকাশের জন্য চালু করা রাষ্ট্রীয় কামধেনু আয়োগের বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন, বারাণসীতে শিলান্যাস হওয়া প্রত্যেকটি প্রকল্পই সঠিক সময়ে সমাপ্ত করা হয়েছে। এরপর তিনি দিব্যাঙ্গজনদের সহায়ক যন্ত্র বিতরণ করেন। সদ্য সমাপ্ত অনূর্ধ্ব-১৭ফিফা বিশ্বকাপে অংশগ্রহণকারী ভারতীয় খেলোয়াড়দের সঙ্গে আজ এখানে এক সাক্ষাৎকারেমিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আলাপচারিতারসময় ফিফা বিশ্বকাপের খেলা চলাকালীন মাঠের ভেতর ও বাইরে তাঁদের অভিজ্ঞতার কথাখেলোয়াড়রা বর্ণনা করেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। আত্মবিশ্বাস এবং উৎসাহ-উদ্দীপনাই যেসাফল্যের প্রথম ধাপ একথাও তিনি তাঁদের বুঝিয়ে বলেন। শ্রী মোদীরমতে, ফুটবলে ভারতের সাফল্যের সম্ভাবনা রয়েছে যথেষ্ট। খেলাধুলো ব্যক্তিত্ব গড়েতোলার পাশাপাশি আত্মবিশ্বাসেরও জন্ম দেয় – একথার উল্লেখ করে তিনি বলেন, সার্বিকবিকাশের লক্ষ্যে এই দুটি বিষয় একান্ত জরুরি। বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির সুফল ছাড়া বিশ্বের কোনও জাতিই যেউন্নতির পথে এগিয়ে যেতে পারে না ইতিহাসে তা এক প্রমাণিত সত্য। কারণ, সফল প্রযুক্তিহ’ল এমন একটি বিষয়, যা সাধারণ মানুষের কল্যাণসাধন করে। বিগত ৭৫ বছর ধরে জাতির সেবায় নিয়োজিত থাকার জন্যসিএসআইআর-এর বিশেষ প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভবিষ্যতে এই সংস্থাটি থেকে আরওঅনেক সাফল্যের প্রত্যাশা রয়েছে আমার। শ্রী মোদী বলেন, সিএসআইআর-এর গবেষণাগারগুলিতে গবেষণাসংক্রান্ত সুযোগ-সুবিধা ছাত্রছাত্রীরা যাতে সর্বোচ্চ মাত্রায় গ্রহণ করতে পারে, সেজন্যপ্রচেষ্টার প্রয়োজন রয়েছে। দেশের নতুন শিল্পোদ্যোগগুলির ক্ষেত্রে এক বড় ধরণেরভূমিকা রয়েছে সিএসআইআর-এর। “কৃষ্ণা নদীতে নৌকাডুবির ঘটনা খুবই দুঃখজনক। এই মর্মান্তিক ঘটনায় যাঁরাপ্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের পরিবার-পরিজনদের মতো আমিও সমান উদ্বিগ্ন। নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদি ইন্দোনেশিয়া ওপেন সুপার সিরিজ টুর্নামেন্টে জয়লাভের জন্য ভারতীয়ব্যাডমিন্টন খেলোয়াড় কিদাম্বি শ্রীকান্তকে অভিনন্দন জানালেন| নয়াদিল্লি, ১৮ মার্চ, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী রবিবার ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে দেশের কৃষকদের উদ্দেশে ভাষণ দেবেন। আগামী ২২ মার্চ এই অনুষ্ঠান আকাশবাণীতে সকাল ১১টায় সম্প্রচারিত হবে। এবারের ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী কৃষক ও তাদের সঙ্গে জড়িত বিষয়গুলি নিয়ে বক্তব্য পেশ করবেন। এ বিষয়ে দেশবাসীকে নিজস্ব মতামত mygov.in – এর মাধ্যমে জানানোর জন্যও তিনি অনুরোধ জানিয়েছেন। ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের বিগত পাঁচটিপর্বে প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন বিষয়ে সরাসরি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মতবিনিময় করেছেন। এর আগে স্বচ্ছ ভারত অভিযান, খাদি শিল্পের প্রসার, দক্ষতা বিকাশ, প্রতিবন্ধী শিশুদের বৃত্তি প্রদান, শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলির জন্য পরিকাঠামো এবং মাদকাশক্তি ও তার পরিণামের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে শ্রী মোদী মতামত ব্যক্ত করেছেন। গত ২২ ফেব্রুয়ারি সম্প্রচারিত ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানের পঞ্চমপর্বে তিনি ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষার চাপ ও ভীতি দূরে সরিয়ে রেখে ইতিবাচক মনোভাব গ্রহণের আহ্বান জানান। মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার ভারত সফরের সময়ও প্রধানমন্ত্রী তাঁকে ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠানে নিয়ে এসে জনগণের সঙ্গে একাধিক বিষয়ে মতবিনিময় করেন। দেশ জুড়ে নাগরিকদের কাছ থেকে এই অনুষ্ঠান সম্পর্কে উৎসাহব্যঞ্জক প্রতিক্রিয়া পাওয়া গেছে। আকাশবাণী ও দূরদর্শনের সমস্ত চ্যানেল একসঙ্গে এই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার করে। প্রধানমন্ত্রীর সরকারি ওয়েবসাইটেও এই অনুষ্ঠান সরাসরি সম্প্রচার (লাইভ স্ট্রিম) করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার কচ্ছের রান অঞ্চলের ধোরদোর টেন্ট সিটিতে পুলিশের মহা নির্দেশকদের তিন দিনের সম্মেলনে যোগ দেবার জন্য এসে পৌছেছেন। এ নিয়ে দ্বিতীয় বার এই সম্মেলন দিল্লির বাইরে অনুষ্ঠিত হচ্ছে। গত বছর এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল গুয়াহাটিতে। প্রধানমন্ত্রী সম্মেলনের উদ্বোধনী অধিবেশনে উপস্থিত ছিলেন এবং এই অধিবেশনে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী শ্রী রাজনাথ সিং ভাষন দেন। প্রধানমন্ত্রী একটি ওয়েবসাইটের সূচনা করেন, ওয়েবসাইটের নাম- “ইন্ডিয়ান পুলিশ ইন সার্ভিস অব দ্য নেশান”। প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং অন্যান্য প্রতিনিধিদের সঙ্গে নিয়ে এরপর টেন্ট সিটির অনতিদূরে হোয়াইট রানের উদ্দেশ্যে যাত্রা করেন। সেখানে তিনি বিএসএফ-এর দ্বারা উপস্থাপিত একটি ‘উট প্রদর্শনী’ দেখেছেন। তিনি হোয়াই রানে সূর্যাস্তও দেখেন এবং এরপর একটি সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানও প্রত্যক্ষ করেছেন। বাজেট পেশেরতারিখ এগিয়ে আনার যৌক্তিকতা প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর ফলে আর্থিক সম্পদের উন্নততরসদ্ব্যবহার নিশ্চিত করা সম্ভব হবে। বিমুদ্রাকরণকেস্বচ্ছ ভারত কর্মসূচির সঙ্গে তুলনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এর লক্ষ্য হ’ল – কালোটাকা ও দুর্নীতি থেকে ভারতকে মুক্ত করা। আসন্ন রিও অলিম্পিকে ভারতের সম্ভাব্য প্রতিনিধিত্বকারী ৬০ জন খেলোয়াড়ের সঙ্গে আজ এক আলাপচারিতায় মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ক্রীড়া প্রতিনিধিদের সঙ্গে আলাপচারিতার ফাঁকে প্রত্যেক খেলোয়াড়ের সঙ্গেই আলাদাভাবে কথা বলেন তিনি। বিশ্বের বৃহত্তম ক্রীড়া মঞ্চে সর্বশক্তি দিয়ে সাফল্য অর্জনের জন্য তিনি তাঁদের বিশেষভাবে উৎসাহিত করেন। ক্রীড়া প্রতিনিধিদলের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন মেরি কম, অঞ্জু ববি জর্জ এবং পি গোপীচাঁদের মতো কয়েকজন বিশিষ্ট প্রাক্তন খেলোয়াড়ও। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, ১৩টি বিভিন্ন ক্রীড়া ক্ষেত্র থেকে ১০০-রও বেশি ভারতীয় খেলোয়াড়কে বেছে নেওয়া হয়েছে রিও অলিম্পিক গেম্‌স-এর জন্য। প্রধানমন্ত্রী বলেন, পৃথিবী যদি স্বামীজির সেই মানবতার বাণীকে স্মরণে রাখত তাহলে তার বহু পরে আজকের দিনেই নাইন/ইলেভেনের সেই জঙ্গি হামলা হয়তো ঘটত না। আশেপাশের সরকারি স্কুলগুলির ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিতির উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ওরাই হল এই অনুষ্ঠানের প্রকৃত প্রধান অতিথি। শ্রী মোদী এই প্রসঙ্গে চিকিৎসাশাস্ত্রে স্নাতক উপাধি পাওয়া সদ্য ডাক্তারদের বলেন যে তাঁদের এই সাফল্য কেবল তাঁদের নিজেদের প্রচেষ্টাতে নয়, বরং তাঁদের সমাজের নানা অংশের মানুষের অবদানের জন্যই। তিনি তাঁদের সমাজের দরিদ্র অংশের কথা তাঁদের পেশার প্রতিটি পর্যায়ে স্মরণে রাখতে বলেন। প্রধানমন্ত্রী চণ্ডীগড়ের ২৫ নম্বর সেক্টরে একটি আবাসন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন এবং একটি জনসমাবেশে ভাষণ দেন। মঞ্চেই প্রাক্তন সৈনিকরা তাঁকে সংবর্ধনা দেন। অনুষ্ঠানে ভাষণ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই অঞ্চলের প্রায় প্রতিটি পরিবারই দেশের সুরক্ষা কবচ কেননা, এখান থেকে বিরাট সংখ্যায় মানুষ প্রতিরক্ষা বাহিনীতে যোগ দেয়। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার সেনাবাহিনীর জন্য ‘এক পদ এক পেনশন’ প্রকল্প চালু করেছে প্রতিশ্রুতি মতো আর এর জন্য সম্পূর্ণ কৃতিত্বই হল দরিদ্র সাধারণের। তিনি বলেন, লোকসভার অচলাবস্থাই তাঁকে এই বিষয়গুলি জনসভায় সরাসরি মানুষের সামনে উত্থাপিত করতে বাধ্য করেছে। চণ্ডীগড় আবাসন পর্ষদে নাগরিকদের সুবিধার জন্য প্রধানমন্ত্রী তথ্যপ্রযুক্তি মঞ্চের সূচনা করেন। তিনি বলেন, সুশাসনে প্রযুক্তির প্রয়োগ মানুষের ক্ষমতায়নে সাহায্য করে। তিনি বলেন, ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে প্রত্যেকের বাড়ি হোক এই তাঁর স্বপ্ন। সদস্যরাজানান যে তাঁরা এই প্রথম এমন একজন প্রধানমন্ত্রীকে দেখছেন যিনি ট্যুইট বার্তারমাধ্যমে মহিলা ক্রিকেট দলের সদস্যদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। তাঁরা বলেন যেপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী যেভাবে ক্রিকেট খেলায় তাঁদের অগ্রগতির বিষয়টিতেলক্ষ্য রাখছেন, তাতে তাঁরা শুধুমাত্র আনন্দিতই নন, একইসঙ্গে গর্বিত ও অনুপ্রাণিত। দৈনন্দিনকাজের চাপের প্রধানমন্ত্রী কিভাবে সামাল দেন সেই প্রশ্নের উত্তরে শ্রী মোদী বলেনযে যোগচর্চার মাধ্যমে শরীর, মন এবং কাজকর্মের মধ্যে একটি সুন্দর ভারসাম্য রক্ষাকরা যায়। বহুআন্তর্জাতিক ক্রীড়াক্ষেত্রে ভারত-কন্যারা ভারতকে গৌরবান্বিত করেছেন একথার উল্লেখকরে শ্রী মোদী বলেন, সমাজের বিভিন্ন ক্ষেত্রে নারীরা যেভাবে এগিয়ে চলেছেন, তাতেআখেরে লাভবান হচ্ছে সমাজ ব্যবস্থাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে বুধবার (২৪শে অক্টোবর) কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে তাইপেই-র ইন্ডিয়া-তাইপেই অ্যাসোসিয়েশন (আইটিএ) এবং ভারতের তাইপেই অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের (টিইসিসি) মধ্যে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তি বা বিআইএ স্বাক্ষরের প্রস্তাবটি অনুমোদিত হয়েছে। দ্বিপাক্ষিক এই বিনিয়োগ চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে উভয় পক্ষের মধ্যে লগ্নি প্রবাহ বৃদ্ধি পাবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেইসঙ্গে, চুক্তিটি আইটিএ এবং টিইসিসি-র মধ্যে পারস্পরিক ভিত্তিতে বিনিয়োগকে সুরক্ষা প্রদান করবে। মন্ত্রিসভার আগামী বৈঠকে চলতি খরিফ মরশুমের ন্যূনতম সহায়ক মূল্য উৎপাদন ব্যয়ের ১৫০% ধার্য করায় অনুমোদন দেওয়া হতে পারে বলে প্রধানমন্ত্রী ঘোষণা করেন। এর ফলে চাষীদের আয় উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পাবে। তিনি এও জানান যে আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে এই বছরের (২০১৮-১৯) আখের মরশুমের জন্য আখের যথাযথ ও লাভজনক মূল্য ঘোষণা করা হবে। এই বছরের মূল্য গত অর্থবর্ষের তুলনায় বেশি হবে বলে শ্রী মোদী জানান। আখ থেকে উপার্জিত অর্থ ব্যয়ের চেয়ে ৯.৫ শতাংশ বেশি হলে চাষীদের উৎসাহভাতাও দেওয়া হবে। আখ চাষীদের বকেয়া মেটাতে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির বিষয়েও প্রধানমন্ত্রী চাষীদের জানান। নয়া নীতি প্রনয়ণের ফলে গত সাত থেকে দশ দিনের মধ্যে ৪০০০ কোটি টাকারও বেশি বকেয়া অর্থ চাষীদের দেওয়া হয়েছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। শ্রী মোদী চাষীদের আশ্বস্ত করে বলেন যে আখ চাষের বকেয়া মেটাতে কার্যকরী পদক্ষেপ গ্রহণ করতে রাজ্য সরকারগুলিকে অনুরোধ জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী, চাষীদের স্প্রিং কলার ও ড্রিপ সেচের মত আধুনিক চাষের পদ্ধতি অবলম্বন এবং সোলার পাম্প ব্যবহারের পরামর্শ দেন। চাষের জমিতে বিদ্যুতের উৎস এবং বাড়তি রোজগারের জন্যও সোলার প্যানেল বসানোরও উপদেশ দেন তিনি। ফসলের গুনমান বাড়ানোর ওপরও তিনি জোর দেন। ফসল ফলনের পরে পড়ে থাকা বর্জ্যের যথাযথ ব্যবহার করে তা থেকে সার ও পরিপোষক তৈরীর মাধ্যমে বাড়তি রোগারের উৎস হিসেবে ব্যবহারের আহ্বান জানান। ২০২২-এর মধ্যে রাসায়নিক সার ব্যবহারের পরিমাণ ১০ শতাংশ পর্যন্ত কমানোর পরামর্শ দেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী আরও স্মরণ করিয়ে দেন যে আখ চাষীদের ২১ হাজার কোটি টাকারও বেশী আর্থিক বোঝা লাঘব করতে ইতিপূর্বে ২০১৪-১৫ ও ২০১৫-১৬-তেও কেন্দ্রীয় সরকার হস্তক্ষেপ করেছে। চিনিকলগুলির মাধ্যমে চাষীদের এই অর্থ প্রদানের বিষয়টি সুনিশ্চিত করা হয়েছিল। কৃষকরা উল্লেখ করেন যে তাদের পারিশ্রমিক দেওয়ার জন্য ৩০ লক্ষ মেট্রিক টন অতিরিক্ত ফসলের ওপর মোট ১১৭৫ কোটি টাকার কর মুকুবের বিষয়ে কেন্দ্রীয় সরকার মধ্যস্হতা করে। দু’দেশের মধ্যে বিশেষ এবং অনন্য সম্পর্ক রয়েছে। দু’দেশের একই লক্ষ্য – মানুষের উন্নয়ন, শান্তি ও সমৃদ্ধি। সেশলস-এ অগ্রগতি হয়েছে অসাধারণ। এই দেশ দেখিয়ে দিয়েছে আয়তন কোনও সমস্যাই নয় সাফল্যের ক্ষেত্রে। প্রেসিডেন্ট মিশেলের সঙ্গে কথোপকথনে দু’দেশের সম্পর্কের গুরুত্বপূর্ণতা আরও মজবুত হয়েছে। ভারতবর্ষ ও সেশেলসের মধ্যে নিরাপত্তা অংশীদারিত্বের ভীতও হয়েছে মজবুত। এই অঞ্চলের নৌ-ক্ষেত্রের নিরাপত্তায় দু’দেশের দায়িত্ব সম্পাদন করার প্রয়াস এই যৌথ অংশীদারিত্বে যথেষ্ট সাহায্য করবে। সেশেলসের নিরাপত্তা সংক্রান্ত বিকাশে ভারতবর্ষের অংশীদার হওয়ার বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। সেশেলস’কে আরও একটি ডর্নিয়ার উড়ান উপহার দেওয়ার কথাও ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সেশেলসের উপকূলের নিরাপত্তায় নজরদারি দৃঢ়তর করার লক্ষ্যে একটি রাডার প্রকল্প উদ্বোধন করার সৌভাগ্য তাঁর হয়েছে। দু’দেশের মধ্যে সহযোগিতায় এও এক নিদর্শন। এই রাডার প্রকল্প নীলাভ পরিবেশের মাঝখানে রূপসী সেশেলসের নিরাপত্তা আরও মজবুত করবে। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলের নিরাপত্তা মজবুত করার লক্ষ্যে সেশেলস্ – এর অবদান যথেষ্ট মর্যাদা পাবে। জলসম্পদ সংক্রান্ত সমীক্ষা দু’দেশের চুক্তিবদ্ধতা ও নৌ-সংক্রান্ত সহযোগিতায় নতুন মাত্রা সংযোজন করবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ও প্রেসিডেন্ট মিশেল ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে সুসংহত সহযোগিতার প্রয়োজনীয়তার ব্যাপারে একমত পোষণ করেন। দু’দেশের উন্নয়নমূলক অংশীদারিত্ব ও ভারত মহাসাগরীয় বলয়ভুক্ত দেশগুলির সমিতির উৎপাদনমূলক সহযোগিতায় বিশ্বাসী যে দু’দেশই তাও জানান কথা প্রসঙ্গে। দু’দেশের সম্পর্কে উন্নয়নমূলক অংশীদারিত্ব একটি শক্তিশালী স্তম্ভ বলে মতপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী। এই অংশীদারিত্ব আরও গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠেছে আজ পরিকাঠামোমূলক উন্নয়ন সংক্রান্ত চুক্তির মাধ্যমে। সেশেলসের ক্ষমতার বিকাশ ও মানবসম্পদ উন্নয়নে ভারতবর্ষ ভাগীদার হওয়ায় সন্তোষ প্রকাশ করেছেন প্রধানমন্ত্রী। ভারত মহাসাগরীয় অঞ্চলে ভারতীয় সহায়তার সব থেকে বেশি ভাগিদার হল সেশেলস। শ্রী মোদী এই সহায়তার আরও সম্প্রসারণের আশ্বাস দেন তাঁর বার্তায়। তিনি বলেন, নীল অর্থনীতি (ব্লু ইকোনমি)-র বিষয়টি আরও সম্প্রসারণ করার ব্যাপারে সেশেলস এখনও পর্যন্ত সর্বাগ্রে রয়েছে। ভারতবর্ষ বিশ্বাস করে, মহাসাগরীয় অঞ্চলের অর্থনীতি ভবিষ্যতের সমস্যাগুলি মেটানোর ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। ব্লু ইকোনমি বা নীল অর্থনীতি বিষয়ক সহযোগিতায় দু’দেশই একটি যৌথ কর্মীগোষ্ঠী স্থাপনে ঐকমত্যে এসেছে বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। এই সহযোগিতায় সামুদ্রিক পরিবেশ এবং সম্পদ বিষয়ক বোঝাপড়া অনেকাংশেই বাড়িয়ে দেবে। ভারসাম্য বজায় রেখে মহাসাগরকে আরও কিভাবে ব্যবহার করা যায় সে বিষয়ে ভাবনা-চিন্তার আরও বিকাশ ঘটবে দু’দেশের এই সহযোগিতার ফলে, বলে আশা করেন প্রধানমন্ত্রী। এই সহযোগিতা দু’দেশের বিজ্ঞান ও অর্থনৈতিক বোঝাপড়াও মজবুত করবে বলে তিনি মত ব্যক্ত করেন। শ্রী মোদী বলেন, বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সংক্রান্ত সম্পর্ক সম্প্রসারণ করার ব্যাপারে দু’দেশই তাদের সমর্থন প্রকাশ করেছে। প্রধানমন্ত্রীর বিশ্বাস সেশেলসের তথ্য প্রযুক্তি এবং পরিষেবা আরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবে। গুরুত্ব অনুযায়ী, ৭ কোটি ৫০ লক্ষ টাকার অনুদান ও ঋণ কোন্ খাতে ব্যবহার করবে তা সেশেলস অচিরেই চিহ্নিত করতে পারবে বলে অভিমত ব্যক্ত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, দু’দেশের মানুষের মধ্যে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ককে যথেষ্ট গুরুত্ব দেয় ভারত। শ্রী মোদী গত বছরে চালু হওয়া এয়ার সেশেলসের উড়ান পরিষেবাকেও স্বাগত জানান। এই প্রসঙ্গে তিনি সেশেলসের নাগরিকদের জন্য তিন মাসের জন্য বিনামূল্যে ভিসা প্রদানের কথা উল্লেখ করেন। পাশাপাশি, আগমনের পরে ভিসা প্রদানের সুবিধা সম্প্রসারণের কথাও জানান। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মঞ্চে সেশেলস যেভাবে ভারত’কে সহযোগিতা করেছে তার জন্য ধন্যবাদ জ্ঞাপন করেন। রাষ্ট্রপুঞ্জের নিরাপত্তা পর্ষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদ অধিকার করার বিষয়টিতেও সেশেলস যে যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়েছে তা তাঁর বক্তব্যে জানান। আবহ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে উন্নত দেশগুলির থেকেও মজবুত মতামত আশা করে দু’দেশ। ক্ষুদ্র দ্বীপ উন্নয়ন বিষয়ক রাষ্ট্রগুলির অবস্থানে ভারতবর্ষ তার সহায়তা প্রদানে বদ্ধপরিকর বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। পাশাপাশি, আফ্রিকার সঙ্গেও ভারতবর্ষের অংশীদারিত্ব পুনরায় প্রতিষ্ঠা করার বিষয়ে অভিমত ব্যক্ত করেন তিনি। পরিশেষে, শ্রী মোদী বলেন, ভারত ও সেশেলসের সম্পর্ক উষ্ণ সৌভ্রাতৃত্বের পরিচায়ক। ভারতবর্ষের ক্ষেত্রে এই সম্পর্ক যথেষ্ট গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (মঙ্গলবার) তিরুবনন্তপুরম সফর করেন। সেখানে তিনি স্বদেশ দর্শন প্রকল্পের সূচনা উপলক্ষে ফলকের আবরণ উন্মোচন করেন। শ্রী পদ্মনাভস্বামী মন্দিরে পূজো দেন তিনি। জাতীয় কৃষি সমবায় বাজারজাতকরণ ফেডারেশন (এন এ এফ ই ডি), প্রজেক্ট এন্ড ইকুইপমেন্ট কর্পোরেশন (পি ই সি), স্টেট ট্রেডিং কর্পোরেশন (এস টি সি) এবং ম্যাটালস এন্ড মিনারেলস কর্পোরেশন (এম এম টি সি) ২০০৬-২০১১-র মধ্যে ডালশস্য আমদানি করার ফলে যে ১১৩ কোটি ৪০ লক্ষ টাকার ক্ষতি হয়েছিল তা পরিশোধ করার জন্য ভোক্তা বিষয়ক, খাদ্য ও গণবন্টন মন্ত্রকের দেওয়া প্রস্তাব অনুমোদন করেছে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা । এর ফলে কেন্দ্রীয় সরকারের অধিগৃহীত সংস্থাসমূহ বাণিজ্যিক কাজকর্মে মূল্য বৃদ্ধি নিয়ন্ত্রণে সক্ষম হবে। এছাড়াও কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ব সংস্থা এমএমটিসি ভোক্তা সাধারণের কাছে খুচরো মূল্যে বিক্রয়ের জন্য ৫০০০ টন তুর ডাল এবং ৫০০০ টন উরাদ ডাল আমদানি করতে পারবে বলে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এই আমদানিকৃত ডালের প্রথম কিস্তি এমাসের ৫ সেপ্টেম্বর তারিখ নাগদ মুম্বাই এসে পৌঁছবে। কেন্দ্রীয় সরকার, বিশেষ করে ডালশস্য ও পেঁয়াজ সহ অন্যান্য অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সামগ্রী সুলভ করতে ও এগুলির মূল্য নিয়ন্ত্রণের জন্য নানাবিধ ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ‘ইঞ্জিনিয়ার্স দিবস’ উপলক্ষে ইঞ্জিনিয়ারদের শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভারতরত্ন শ্রী এম. বিশ্বেসরাইয়ার জন্ম বার্ষিকীতে প্রধানমন্ত্রী তাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জ্ঞাপন করেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “আমার প্রিয় ইঞ্জিনিয়ার বন্ধুরা, ইঞ্জিনিয়ার্স দিবসে আপনাদের শুভেচ্ছা জানাই। আপনাদের কঠোর পরিশ্রম ও উদ্ভাবনকে আমি অভিবাদন জানাই। ভারতের অন্যতম শ্রেষ্ঠ ইঞ্জিনিয়ার ভারতরত্ন এম. বিশ্বেসরাইয়া’কে তাঁর জন্ম বার্ষিকীতে আমার শ্রদ্ধা জানাই। তামিলনাড়ুরমাননীয় রাজ্যপাল, তামিলনাড়ুরমাননীয় মুখ্যমন্ত্রী, মন্ত্রিসভায়আমার সহকর্মীবৃন্দ, তামিলনাড়ুরমাননীয় উপ-মুখ্যমন্ত্রী এবং আদিয়ারের ক্যান্সার ইনস্টিটিউটে আজ উপস্থিত থাকতেপেরে আমি আনন্দিত। এটি হল ভারতের প্রাচীনতম এবং সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ সুসংহতক্যান্সার চিকিৎসাকেন্দ্রগুলির অন্যতম। ‘প্রধানমন্ত্রীস্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনা’র আওতায় আটটি বর্তমান প্রতিষ্ঠানকে ক্যান্সার সম্পর্কেসমীক্ষা ও গবেষণার ব্যবস্থা সমন্বিত কেন্দ্র রূপে উন্নীত করে তোলা হচ্ছে।প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে ২০১৭-র জাতীয়স্বাস্থ্য নীতিতে। ‘আয়ুষ্মানভারত’-এর সুসংহত প্রাথমিক স্বাস্থ্য পরিচর্যা ব্যবস্থার আওতায় সাধারণ মানুষেরবসবাসের নিকটবর্তী এলাকাতেই আমরা প্রতিরোধমূলক এবং নিরাময় সম্পর্কিত সুযোগ-সুবিধারপ্রসার ঘটাব। ‘আয়ুষ্মানভারত’-এর আরেকটি বৈশিষ্ট্য হল ‘প্রধানমন্ত্রী জাতীয় স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি’। এই কর্মসূচির আওতায় প্রতি বছরপরিবারপ্রতি ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বীমা সুরক্ষার সুযোগ সম্প্রসারিত হবে। সরকারিঅর্থানুকূল্যে এটিই হবে বিশ্বের বৃহত্তম স্বাস্থ্য সুরক্ষা কর্মসূচি। ক্যান্সারেরমতো একটি রোগের প্রতিরোধ, নিয়ন্ত্রণ ও ব্যবস্থাপনার লক্ষ্যে এগিয়ে আসা উচিৎস্বেচ্ছাসেবী সংস্থা এবং বেসরকারি সংগঠন সহ সমাজের সর্বস্তরের মানুষের। এখানকার৩০ শতাংশ বেডই ফ্রি, অর্থাৎ এই ধরনের বেডের সুযোগ পাওয়ার জন্য রোগীদের কোনরকম ব্যয়করতে হয় না। এইপ্রতিষ্ঠানটির মলিকিউলার অঙ্কোলজি বিভাগটি ২০০৭ সালে একটি উৎকর্ষকেন্দ্র রূপেঘোষণা করে কেন্দ্রীয় সরকার। সহযোগিতামূলকযুক্তরাষ্ট্রীয়তার প্রতি কেন্দ্রীয় সরকার অঙ্গীকারবদ্ধ। আমাদের মন্ত্রই হল ‘সব কাসাথ, সব কা বিকাশ’। ১ এপ্রিল, ২০১৭-রঅনেক আগেই যাতে প্রস্তুতির সমস্তরকম কাজ সম্পূর্ণ হয় তা নিশ্চিত করার নির্দেশ দেনপ্রধানমন্ত্রী। বীর শহীদের মর্মর মূর্তিতে মাল্যদান করে প্রধানমন্ত্রী তাঁর জন্মস্থানে স্মারক সৌধ পরিদর্শন করেন। এক জনসভায় ভাষণ দিতে গিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন ০৯ আগস্টের এই দিনেইমহাত্মা গান্ধী ব্রিটিশ শাসনের অবসানকল্পে ইংরেজদের প্রতি ভারত ছাড়ো আন্দোলনের ডাক দিয়েছিলেন। তিনি জনসাধারণকে সেইসব মহাপ্রাণদের মনে রাখতে বলেন, যাঁরা সেদিন অকাতরেপ্রাণ বিসর্জন দিয়ে আমাদের আজ স্বাধীনতার মুক্ত বাতাসে শ্বাস নেওয়ার সুযোগ করেদিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, চন্দ্রশেখর আজাদের জন্মস্থানে আসতে পারাটাতাঁর কাছে বিশেষ সৌভাগ্য। এঁদের মতো মানুষই আমাদের দেশের জন্য কাজ করতে প্রেরণাযোগায় বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের মধ্যে যাঁরা দেশের জন্য প্রাণ দেওয়ার সুযোগ পাননি, তাঁদের অবশ্যই দেশের জন্য বাঁচার সুযোগ নেওয়া উচিৎ। প্রধানমন্ত্রীজোর দিয়ে বলেন যে, কোনও দেশ তার অধিবাসীদের বলিষ্ঠতা, তাদের আকাঙ্খা ও কঠোরপরিশ্রমের ওপর ভিত্তি করেই এগোয়। প্রত্যেক ভারতবাসীই কাশ্মীরকে ভালোবাসেন এবং তাঁরা কাশ্মীর সফরকরতে চান বলে প্রধানমন্ত্রী জানান। এ প্রসঙ্গে তিনি আরও বলেন, কয়েকজন মাত্রবিপদগামী কাশ্মীরের মহান ঐতিহ্যকে বিনষ্ট করার অপচেষ্টা চালাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী জানান, কেন্দ্রীয় সরকার কাশ্মীরের যুবশক্তির জন্যকর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি করতে চায়। তিনি কাশ্মীরের যুব সমাজের প্রতি কাশ্মীরকে ‘ পৃথিবীর স্বর্গ ’ করে তোলার স্বপ্ন নিয়েএগিয়ে যাওয়ার আহ্বান জানান। তিনি আরও বলেন কাশ্মীর শান্তি চায় এবং কাশ্মীরের মানুষপর্যটনের মধ্য দিয়েই আরও বেশি উপার্জনে আগ্রহী। কেন্দ্র ও জম্মু-কাশ্মীর সরকার উন্নয়নের মাধ্যমে সব সমস্যার সমাধানের পথ খুঁজছে। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর ইনসানিয়াত,জমহুরিয়াত ও কাশ্মীরিয়ত-এর স্বপ্নকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে বলে তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখন প্রয়োজন সকলকে দেশকে নতুন উচ্চতায় নিয়েযাওয়ার অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে কাজ করতে হবে। ভারতীয় ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকাই আমাদের ঐক্যবদ্ধ করে এবং দেশের ভাগ্যকে নতুন করে রচনা করার প্রেরণা যোগায়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নয়ডায় পেট্রোটেক ২০১৯ সম্মেলনে নিম্নলিখিত বক্তব্য পেশ করেছেন। পরিবহনের সমস্যায় এখানে আসতে বিলম্ব হওয়ায় আমি মার্জনা চাইছি। আমি আপনাদের সবাইকে ভারতের ত্রয়োদশ হাইড্রোকার্বন সম্মেলন, পেট্রোটেক ২০১৯- এ স্বাগত জানাতে পেরে আনন্দিত। আমি মাননীয় ডঃ সুলতান আল জাবেরকে শক্তিক্ষেত্রে তাঁর অবদান এবং ভবিষ্যত বিষয়ে তাঁর দৃষ্টিভঙ্গির জন্য অভিনন্দন জানাই। আমরা আমাদের দেশগুলিতে নাগরিকদের জন্য সুলভে পরিচ্ছন্ন এবং নিশ্চিত শক্তির সরবরাহ করতে চাই। এই ক্ষেত্রে আমাদের অভিন্ন লক্ষ্য এবং অনুসন্ধিৎসার প্রতিফলন ঘটেছে এই সম্মেলনে ৬০টিরও দেশের ৭ হাজার প্রতিনিধির উপস্হিতির মধ্যে। জনজীবনে কয়েকটি দেশক অতিবাহিত করার মধ্য দিয়ে আমি বুঝতে পেরেছি, শক্তিই হচ্ছে আর্থ-সামাজিত বৃদ্ধির প্রধান চালিকাশক্তি। অর্থনীতির দ্রুত বৃদ্ধির জন্য প্রয়োজন হচ্ছে, যথাযথ মূল্যে স্হিতিশীল ও সুষম শক্তির সরবরাহ। এছাড়া সমাজের দরিদ্র এবং বঞ্চিত শ্রেণীর জন্য অর্থনৈতিক সুবিধা প্রদানের ক্ষেত্রেও শক্তির সহায়ক ভূমিকা রয়েছে। ব্যাপক অর্থে শক্তিক্ষেত্র হচ্ছে বৃদ্ধির জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং প্রধান বিষয়। আজ যখন আমরা এখানে বিশ্বের শক্তিক্ষেত্রের বর্তমান এবং ভবিষ্যৎ পরিস্হিতি আলোচনার জন্য সমবেত হয়েছি, সেইসময় বিশ্বের শক্তিক্ষেত্রে পরিবর্তনের হাওয়া বইছে। শক্তির সরবরাহ, শক্তির উৎসগুলি এবং শক্তি ব্যবহারের ধরণ বদলে যাচ্ছে। হয়ত এক ঐতিহাসিক উত্তরণের অঙ্গ হিসাবেই এটা ঘটছে। শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে বর্তমান প্রবণতা পশ্চিত থেকে পূর্ব দিকে সরে যাচ্ছে। শেল বিপ্লবের পর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র বিশ্বের বৃহত্তম তেল এবং গ্যাস উৎপাদক দেশ হিসেবে উঠে এসেছে। সৌরশক্তি এবং অন্যান্য পুনঃর্নবীকরণযোগ্য শক্তির উৎসগুলি বর্তমানে আরও বেশি প্রতিযোগিতামূলক হয়ে উঠেছে।। তারা চিরাচরিত ধরণের শক্তির সুষম বিকল্প হয়ে উঠতে চলেছে। প্রাকৃতিক গ্যাসও বিশ্বের শক্তিক্ষেত্রে অন্যতম বৃহৎ জ্বালানী হয়ে উঠছে। স্বল্প মূল্যের পুনঃনর্বীকরণযোগ্য শক্তি, প্রযুক্তি এবং এগুলির ডিজিটাল প্রয়োগ যেন একত্রিত হতে চলেছে বলে ইঙ্গিত মিলছে। দ্রুত সুষম উন্নয়নের লক্ষ অর্জনে এই প্রবণতা বিশেষ সহায়ক হতে পারে। জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা মোকাবিলায় বিভিন্ন দেশ একজোট হয়েছে। ভারত এবং ফ্রান্সের উদ্যোগে আন্তর্জাতিক সৌরজোটের মতো বিশ্বব্যাপি অংশিদারিত্বের মধ্যে এর প্রতিফলন ঘটেছে। আমরা আরও বেশি শক্তি প্রাপ্তিযোগ্যতার এক যুগে প্রবেশ করেছি। কিন্তু এখনও সারা বিশ্বের ১০০ কোটিরও বেশি মানুষের নাগালে বিদ্যুৎকে নিয়ে আসা সম্ভব হয়নি। বহু মানুষের জন্য এখনও পরিচ্ছন্ন রান্নার জ্বালানীর ব্যবস্হা করা যায়নি। ভারত সবার জন্য শক্তির ব্যবস্হা করার ক্ষেত্রে উদ্যোগের নেতৃত্ব দিচ্ছে। আমাদের সাফল্যের মধ্যে আমি পৃথিবীর মানুষের শক্তির সমস্যার সমাধানের আশা দেখতে পাই। প্রত্যেক মানুষেরই পরিচ্ছন্ন সুলভ, সুষম এবং সমানভাবে শক্তি সরবরাহের সুযোগ পাওয়া দরকার। শক্তি সংক্রান্ত সুবিচার ভিত্তিক একটি যুগে ভারতের অবদান বিশেষভাবে তাৎপর্যপূণ বর্তমানে ভারত বিশ্বের মধ্যে দ্রুত বর্ধনশীল বৃহৎ এক অর্থনীতি হয়ে উঠেছে। আইএমএফ এবং বিশ্বব্যাঙ্কের মতো আন্তর্জাতিক সংস্হাগুলি অনুমান করছে যে আগামী বছরগুলিতেও ভারতীর অযর্থনীতির বৃদ্ধির এই প্রবণতা বজায় থাকবে। অনিশ্চিত বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিবেশের মধ্য ভারত যেন বিশ্ব অর্থনীতির নোঙ্গর হিসাবে স্হিতিশীল এক ভূমিকা দেখিয়েছে। সম্প্রতি ভারত বিশ্বের মধ্যে ষষ্ঠ বৃহত্তম অর্থনীতির দেশ হিসাবে মর্যাদা লাভ করেছে। সাম্প্রতিক এক রিপোর্টে জানা গেছে, ২০৩০ সালের মধ্যে ভারত বিশ্বের মধ্যে দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠতে পারে। ২০৪০ সালের মধ্যে আমাদের দেশে শক্তির চাহিদা যেহেতু দ্বিগুনেরও বেশি বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবন রয়েছে, ভারত শক্তি কোম্পানীগুলির কাছে এক আকর্ষনীয় বাজার হয়ে উঠেছে। শক্তি পরিকল্পনার লক্ষে আমরা একটি সুসংহত দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করেছি। ২০১৬-র ডিসেম্বর মাসে গত পেট্রোটেক সম্মেলনের সময় আমি ভারতের শক্তির ভবিষ্যতের জন্য চারটি স্তম্ভের কথা উল্লেখ করেছিলেন। এগুলি হল, সবার নাগালে শক্তির ব্যবস্হা করা, শক্তিক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধি, শক্তির সুষমতা এবং শক্তির নিরাপত্তা। শক্তির ক্ষেত্রে সুবিচার আমার জন্য একটি প্রধান লক্ষ্য এবং ভারতের জন্য শীর্ষস্হানীয় অগ্রাধিকার। এই লক্ষ্যে আমরা বহু নীতি গ্রহণ করেছি এবং তা রূপায়ণ করেছি। এই নীতি রূপায়ণের সুফল এখন দেখা যাচ্ছে। আমাদের সমস্ত গ্রামাঞ্চলে বিদ্যুৎ পৌঁছে গেছে। এই বছরেই আমরা ভারতে পরিবারগুলিকে ১০০ শতাংশ বিদ্যুতায়নের লক্ষ্য অর্জন করতে চলেছি।সৌভাগ্য নামে এক সুনির্দিষ্টি কর্মসূচির মাধ্যমে আমরা এই লক্ষ্য অর্জনের উদ্যোগ গ্রহণ করেছি। যখন আমরা আমাদের শক্তি উপাদন বাড়াচ্ছি, সেইসময়, তা পরিবহন এবং সরবরাহ ক্ষেত্রে যাতে নষ্ট না হয়, তা নিশ্চিত করারও লক্ষ্য নিয়েছি। উদয় নামে আমাদের এক কর্মসূচির অধীনে আমরা এই লক্ষ্য অর্জনের দিকে এগিয়ে চলেছি। সহজে বিদ্যুৎ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে বিশ্ব ব্যাঙ্কের ক্রমতালিকায় ভারতের স্হান ২০১৪ সালে ছিল ১১১, ২০১৮-য় এই স্হান ২৯-এ উঠে এসেছে। মহিলা এবং শিশুদের ধোঁয়া জনিত দূষণের হাত থেকে বাঁচাতে পরিচ্ছন্ন রান্নার জ্বালানী বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নেয়। উজ্জ্বলা কর্মসূচিতে মাত্র তিন বছরে দেশের ৬.৪ কোটি পরিবারে রান্নার গ্যাস সংযোগ দেওয়া হয়েছে। ‘একটি নীল শিখার বিপ্লব চলেছে।’ ৫ বছর আগে যেখানে সারা দেশে ৫৫ শতাংশ পরিবারে রান্নার গ্যাসের সংযোগ ছিল, বর্তমানে তা বেড়ে ৯০ শতাংশেরও বেশি হয়েছে। পরিচ্ছন্ন পরিবহনের ব্যবস্হাও আগের তুলনায় বৃদ্ধি পেয়েছে। আমরা ২০২০-এ এপ্রিলের মধ্যে যানবাহনে শক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আমাদের দেশ বিএস-৪ থেকে বিএস-৬ এর পর্যায়ে উন্নীত হবে। এটি আন্তর্জতিক ক্ষেত্রের ইউরো-৬-এর সমতুল। রাজস্ব ভাগাভাগির ক্ষেত্রেও নিলামে অংশগ্রহণের পদ্ধতি পরিবর্তন করা হয়েছে। এরফলে এই ক্ষেত্রে সরকারের হস্তক্ষেপ কমানো সম্ভব হয়েছে। ওপেন একারেজ লাইসেন্সিং পলিসি এবং ন্যাশনাল ডেটা রিপোজিটরির মাধ্যমে ভারতে হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধানে আগ্রহ বেড়েছে। এছাড়া প্রাকৃতিক গ্যাসের দামের ক্ষেত্রে সংস্কার প্রক্রিয়া চালু হয়েছে। বর্ধিত তেল উদ্ধার নীতির মাধ্যমে সাম্প্রতিকতম প্রযুক্তি ব্যবহার করে দেশের আপস্ট্রিম তৈলক্ষেত্রগুলিতে উপাদন বৃদ্ধির ব্যবস্হা নেওয়া হয়েছে। আমাদের ডাউনস্ট্রিম তৈল ক্ষেত্রকে সম্পূর্ণভাবে উদারীকরণ করা হয়েছে। আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে অপরিশোধিত খনিজ তেলের মূল্যের ওপর নির্ভর করে খোলা বাজারের চাহিদা অনুসারে পেট্রেল ও ডিজেলার দাম নির্ধরণ করা হয়েছে। সারা বিশ্বের মধ্যে অপরিশোধিত খনিজ তেল পরিশোধনের ক্ষেত্রে ভারত চতুর্থ স্হান দখল করেছে। ২০৩০ সালের মধ্যে এই পরিশোধন ক্ষমতা আরও ২০ কোটি মেট্রিক টন বাড়বে। গত বছর একটি জাতীয় জৈব জ্বালানী নীতি কার্যকর হয়েছে। দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রজন্মের জৈব জ্বালানী বিষয়ে গবেষনায় উৎসাহ দেওয়া হচ্ছে। দেশের ১১টি রাজ্যে ১২টি দ্বিতীয় প্রজন্মের জৈব শোধনাগার স্হাপন করা হচ্ছে। ইথানল মিশ্রন এবং জৈব ডিজেল কর্মসূচি ফলে কার্বন নির্গমন কমেছে এবং এরফলে কৃষকের আয়ও বৃদ্ধি পেয়েছে। আমাদের অসামরিক উড়ান ক্ষেত্রে জৈব বিমান জ্বালানীর ব্যবহার সাফল্যের সঙ্গে পরীক্ষা করা হয়েছে। আমাদের সরকার সমগ্র তেল এবং গ্যাসের মূল্য শৃঙ্খলে বেসরকারি অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করছে। ভারত এই ক্ষেত্রে প্রত্যক্ষ বৈদেশিক বিনিয়োগের এক আকর্ষণীয় কেন্দ্র হয়ে উঠছে। সৌদি অ্যারামকো, অ্যাডনক, টোটাল, এক্সন-মোবিল, বিপি এবং শেল-এর মতো কোম্পানীগুলি আমাদের দেশের তৈলক্ষেত্রে তাদের লগ্নী বাড়িয়েছে। ভারত গ্যাস ভিত্তিক অর্থনীতিতে দ্রুত অগ্রগতি ঘটিয়েছে। ১৬ হাজার কিলোমিটারেরও বেশি গ্যাস পাইপলাইন নির্মাণ করা হয়েছে এবং ১১ হাজার কিলোমিটার পাইপলাইনের কাজ চলছে। পূর্ব ভারতে ৩ হাজার ২০০ কিলোমিটার দীর্ঘ গ্যাস পাইপলাইনের কাজ চলছে। এই কাজ সম্পূর্ণ হলে উত্তর-পূর্ব ভারত জাতীয় গ্যাস গ্রীডের সঙ্গে সংযুক্ত হবে। আগামী ১ মাসের মধ্যে বিভিন্ন শহরে গ্যাস সরবরাহের জন্য দশম রাউন্ডের নিলাম সম্পূর্ণ হবে। এর মাধ্যমে আমাদের দেশের চারশোর-ও বেশি জেলা গ্যাস সংযোগের আওতায় আসবে। আমাদের দেশের জনসংখ্যার ৭০ শতাংশই শহরের গ্যাস সরবরাহের ব্যবস্হার আওতায় আসবে। আমরা চতুর্থ প্রজন্মের শিল্পের জন্য তৈরি হচ্ছি। নতুন প্রযুক্তি এবং কৃৎকৌশল ব্যবহারের ফলে, শিল্প পরিচালনের ধরনটাই বদলে যাবে। আমাদের কোম্পানীগুলি তাদের কর্মদক্ষতা, নিরাপত্তা বাড়াতে এবং উৎপাদন ব্যয় কমানোর জন্য আধুনিকতম প্রযুক্তি গ্রহণ করছে। খুচরো ব্যবসা, তেল এবং গ্যাস উৎপাদন, সম্পদ পরিচালন এবং দূরসংবেদী নজরদারির ক্ষেত্রে এই প্রযুক্তি ব্যবহার করা হচ্ছে। সাম্প্রতিক বছরগুলিতে আমরা আন্তর্জাতিক শক্তিসংস্হা ও ওপেক-এর মতো সংগঠনের সঙ্গে যোগাযোগ আরও বৃদ্ধি করেছি। ২০১৬ থেকে ২০১৮ পর্যন্ত আমরা আন্তর্জাতিক শক্তি মঞ্চের চেয়ারম্যান ছিলাম। দ্বিপাক্ষিক পর্যায়ে লগ্নির মাধ্যমে আমরা আমাদের ক্রেতা-বিক্রেতার পুরনো ধরনের যোগাযোগকে কৌশলগত অংশিদারিত্বে পরিবর্তন করেছি। নেপাল, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, ভুটান এবং মায়নমারের মতো দেশগুলির সঙ্গে শক্তিক্ষেত্রে যোগাযোগ বৃদ্ধি করে আমরা আমাদের ‘প্রতিবেশি প্রথম’ নীতি রূপায়ণ করেছি। তেল এবং গ্যাস ক্ষেত্রে সিইওদের সঙ্গে আমি নিয়িমিত যোগাযোগ রক্ষা করে চলি। বিশ্ব নেতৃবৃন্দ এবং সিইওদের সঙ্গে আমার আলোচনায় আমি বরাবরই বলেছি, তেল এবং গ্যাস কেবলমাত্র পণ্য বাণিজ্য নয়, এটি এক প্রয়োজনও বটে। সাধারণ মানুষের রান্নাঘরের জন্যই হোক অথবা বিমানের জন্য, সর্বক্ষেত্রেই শক্তি বিশেষভাবে প্রয়োজন। তেল এবং গ্যাসের বাজারের ক্ষেত্রে আমাদের আরও বেশি করে স্বচ্ছ এবং স্হিতিস্হাপক দৃষ্টিভঙ্গি গ্রহণ করতে হবে। কেবলমাত্র তার মাধ্যমেই আমরা মানবজাতির শক্তির প্রয়োজন যথাযথভাবে মেটাতে পারবো। আরও একটি প্রধান বিষয় হচ্ছে, জলবায়ু পরিবর্তন নিয়ে পৃথিবীর সকলের ঐক্যবদ্ধ হওয়া। সবাই মিলে একজোট হলেই আমরা প্যারিসে সিওপি-২১ সম্মেলনে গৃহিত লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করতে পারবো। শক্তি ক্ষেত্রের ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনার জন্য পেট্রোটেক সম্মেলন একটি উপযুক্ত মঞ্চ। আগামীদিনে এই ক্ষেত্রের পরিবর্তন, নীতি, নতুন প্রযুক্তি কিভাবে বাজারের স্হিতিশীলতা এবং ভবিষ্যৎ লগ্নির সম্ভাবনাকে প্রভাবিত করবে তা নিয়ে এখানে আলোচনা করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামী ২৭শে জানুয়ারি তামিলনাড়ুর মাদুরাই সফরে যাচ্ছেন। প্রধানমন্ত্রী স্বাস্থ্য সুরক্ষা যোজনার আওতায় সারা দেশে ২০টি এইম্‌স এবং ৭৩টি মেডিকেল কলেজের মানোন্নয়নের যে কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, তার অঙ্গ হিসাবে এই প্রকল্পগুলি রূপায়িত হচ্ছে। আমি তথ্য প্রযুক্তির বিশ্বকংগ্রেস উদ্বোধন করতে পেরে খুশি হয়েছি। এই প্রথম ভারতে এই ধরনের অনুষ্ঠানের আয়োজনকরা হয়েছে। ন্যাশকম, উইটসা এবং তেলেঙ্গানা সরকারের যৌথ অংশিদারিত্বে এই অনুষ্ঠানেরআয়োজন করা হয়েছে। এই সম্মেলনের ফাঁকে আমি আশাকরি যে আপনারা হায়দরাবাদের গতিশীল ইতিহাস এবং অসাধারণ খাদ্যবস্তু আশ্বাদনের জন্যসময় বের করতে পারবেন। আমি নিশ্চিত আপনাদের সেই অভিজ্ঞতা ভারতের অন্যান্য স্হানেওআপনাদের ভ্রমণে উদ্বুদ্ধ করবে। প্রকৃতপক্ষে ভারত হচ্ছে একপ্রাচীন, সমৃদ্ধ এবং বৈচিত্রপূর্ণ সংস্কৃতির স্হান, যার মধ্য দিয়ে ঐক্যের সুরটিবিধৃত হয়েছে। ‘ বসুধৈব কুটুম্বকম ’ -এর ধারনা অর্থাৎ সারা বিশ্বই এক পরিবার, ভারতীয় দর্শনে গভীরভাবে প্রোথিতরয়েছে। এর মধ্য দিয়ে আমাদের সবাইকে নিয়ে চলার ঐতিহ্য প্রতিফলিত হয়। ২১ শতকেপ্রযুক্তি যেন এই ধারনাকে আরও অনেকটাই এগিয়ে দিয়েছে। প্রযুক্তি আমাদেরবাধা-বন্ধহীন ও অখন্ড বিশ্বের স্বপ্নকে সাকার করতে সাহায্য করে। এ হচ্ছে এমন একবিশ্বের ধারনা যেখানে ভৌগলিক দূরত্ব আরও সুন্দর ভবিষ্যতের জন্য সহযোগিতার ক্ষেত্রেপ্রতিবন্ধক হতে পারবে না। আমরা সারা বিশ্বের মধ্যে সবচেয়েপ্রযুক্তিবান্ধব দেশগুলির মধ্যে ছিলাম এবং আছি। আমাদের দেশে অপটিক্যাল ফাইবার দিয়েযুক্ত এক লক্ষের-ও বেশি গ্রাম, ১২১ কোটি মোবাইল ফোন, ১২০ কোটি আধার এবং ৫০ কোটিইন্টারনেট ব্যবহারকারি রয়েছে। ভারতে প্রযুক্তির ক্ষমতাকেকাজে লাগিয়ে ভবিষ্যতের দিকে দ্রুত এগিয়ে যাওয়া এবং একইসঙ্গে প্রত্যেক নাগরিকেরক্ষমতায়নের সুযোগ রয়েছে। কয়েক বছর আগেও এভাবে প্রযুক্তি ব্যবহারের কথা ভাবা যেতনা। আমরা বিগত সাড়ে তিন বছরেসাফল্যের সঙ্গে এই ধরনের ডিজিটাল জীবনচক্রের কাজ সম্পন্ন করেছি। এটা সম্ভব হয়েছেসাধারণ মানুষের ব্যবহারিক পরিবর্তন এবং পদ্ধতিগত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে। ডিজিটালভারত বর্তমানে কেবলমাত্র এক সরকারি উদ্যোগ-ই নয়, বিষয়টি মানুষের জীবনের অঙ্গ হয়েগিয়েছে। প্রযুক্তি বর্তমানেকেবলমাত্র পাওয়ার পয়েন্ট প্রেজেন্টেশন-এর মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই, তার বাইরেও তা এখনমানুষের জীবনের অঙ্গ হয়ে উঠেছে। যেখানে অধিকাংশ সরকারি উদ্যোগের সাফল্যের জন্যসরকারকেই চেষ্টা করতে হয় সেখানে ডিজিটাল ভারত কর্মসূচি মানুষের প্রয়োজনের টানেইসফল হয়ে উঠছে। দেশের ১৭২টি হাসপাতালে ২কোটি ২০ লক্ষ ডিজিটাল লেনদেন রোগীদের পক্ষে দারুনভাবে সুবিধাজনক এক ব্যবস্হা হয়েউঠেছে। ভারতের জাতীয় স্কলারশিপ পোর্টাল-এ সহজে স্কলারশিপ পাওয়ার জন্য ১ কোটি ৪০লক্ষ ছাত্রছাত্রী নিজেদের নাম নথিভুক্ত করেছে। ২০১৮-র জানুয়ারিতেই ভিম-ইউপিআই ব্যবহার করে প্রায় ১৫ হাজার কোটি টাকারসমতুল পরিমান ডিজিটাল লেনদেন হয়েছে। ‘ উমং ’ নামে একটি অ্যাপ মাত্র তিনমাস আগে চালু হলেও, ইতিমধ্যেই তার মাধ্যমে ১৮৫ ধরনের সরকারি পরিষেবা পাওয়া যাচ্ছে। দেশের বিভিন্ন স্হানে ২ লক্ষ৮০ হাজার অভিন্ন পরিষেবা কেন্দ্র মানুষকে ডিজিটাল পরিষেবা দিচ্ছে। গ্রামীন ভারতের মানুষকেডিজিটালি স্বাক্ষর করে তোলার জন্য, প্রত্যেক পরিবারে ডিজিটাল স্বাক্ষরতা সুনিশ্চিতকরার লক্ষ্যে ৬ কোটি প্রাপ্তবয়স্ক মানুষকে ডিজিটাল স্বাক্ষর করে তুলতেপ্রধানমন্ত্রী গ্রামীন ডিজিটাল স্বাক্ষরতা মিশন নামে এক অভিযানের কাজ শুরু করেছি। এইকর্মসূচির আওতায় ইতিমধ্যেই ১ কোটি মানুষকে প্রশিক্ষণ দেওয়া সম্ভব হয়েছে। আমরা মেক ইন ইন্ডিয়া এবংডিজিটাল ইন্ডিয়া কর্মসূচিকে একত্রিত করার লক্ষ্যে অনেকদুর অগ্রসর হয়েছি। এর ফলে ক্ষুদ্রএবং মাঝারি উদ্যোগগুলিও সরকারের পণ্য দ্রব্যের চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে অন্যদেরসঙ্গে প্রতিযোগিতায় সামিল হতে পারে। এই খুব সাধারণ তথ্যপ্রযুক্ত ব্যবস্হাটি সরকারিসংগ্রহের কাজকে স্বচ্ছ করে তুলেছে। গতকাল মুম্বাই বিশ্ববিদ্যালয়েওয়াধানি ইন্সটিটিউট অফ আর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স জাতির উদ্দেশে অর্পণ করার সুযোগআমার হয়েছে। কয়েকদিন আগে দুবাই-এ বিশ্বসরকারি শীর্ষ বৈঠকে আমার ‘ ভবিষ্যতেরসংগ্রহালয় ’ নামে একটি প্রদর্শনী পরিদর্শনেরসুযোগ হয়েছিল। এই প্রদর্শনীটি নতুন নতুন ধারণার আঁতুড়ঘর হিসাবে ও উদ্ভাবনে উ ৎসাহদানের লক্ষ্যে পরিকল্পিতহয়েছে। আমি প্রযুক্তি ক্ষেত্রে অগ্রদুতদের কাজের জন্য প্রশংসা করি, যার মধ্যে বেশকয়েকজন আজ শ্রোতৃমন্ডলীর মধ্যে রয়েছেন। তাঁরা মানবজাতির এক উজ্জ্বল ভবিষ্যতেরলক্ষ্যে কাজ করে চলেছেন। আমরা বর্তমানে চতুর্থ শিল্পবিপ্লবের মধ্যে দাঁড়িয়ে রয়েছি। প্রযুক্তিকে যদি মানুষের ভালো করার জন্য ব্যবহারকরা যায়, তাহলে তা মানবজাতির দীর্ঘমেয়াদী উন্নয়ন এবং আমাদের পৃথিবীর সুষম ভবিষ্যতনিশ্চিত করতে পারে। এরকমই এক প্রেক্ষিতে আমি আজ ভারতে আয়োজিত বিশ্ব তথ্য প্রযুক্তিসম্মেলনকে দেখতে চাই। এই সম্মেলনের মূল সুরটিআমাদের বিভিন্ন সুযোগের দিকে দৃষ্টি নিবদ্ধ করবে। ভবিষ্যতের কর্মস্হলের জন্যনাগরিকদের দক্ষতা বৃদ্ধির কাজটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। ভারতে আমরা আমাদের সন্তান ওযুবকদের উজ্জ্বল ভবিষ্যতের জন্য প্রস্তুত করতে জাতীয় দক্ষতা উন্নয়ন মিশন চালুকরেছি। আমাদের এটাও নিশ্চিত করতে হবে যে বর্তমানে কর্মরত শ্রমিক কর্মচারিদের নতুনপ্রযুক্তিতে দক্ষ করে তোলা প্রয়োজন। আজকের এই অনুষ্ঠানে অন্যতমআমন্ত্রিত বক্তা সোফিয়া নামে এক রোবট নতুন প্রযুক্তির সম্ভাবনার দিকে দৃষ্টিনির্দেশ করছে। আমাকেবলা হয়েছে যে ন্যাশকম ৮টি গুরুত্বপূর্ণ প্রযুক্তিকে চিহ্নিত করেছে। এর মধ্যে রয়েছেআর্টিফিসিয়াল ইন্টেলিজেন্স বা কৃত্রিম মেধা ; ভার্চুয়ালরিয়েলিটি বা আপাত বাস্তব, রোবোটিক প্রোসেস অটোমেশন বা রোবোটের মাধ্যমে স্বংয়ক্রিয়পদ্ধতিতে কাজ চালানো এবং ইন্টারনেট অফ থিংস। এছাড়াও বিগ ডেটা অ্যানালিটিক্স,ত্রিমাত্রিক মুদ্রণ ব্যবস্হা, ক্লাউড কম্পিউটিং এবং সোশ্যাল মিডিয়া ও মোবাইলপ্রযুক্তি। ন্যাশকমের পক্ষ থেকে পৃথিবী জুড়ে যেসব কাজের চাহিদা ক্রমবর্ধমান, সেইধরনের ৫৫টি কাজকেও চিন্হিত করা হয়েছে। আমি নিশ্চিত ‘ ভবিষ্যতেরদক্ষতা ’ নামে এই মঞ্চটি ভারতকে প্রতিযোগিতামূলক ক্ষেত্রেঅনেক দুর এগিয়ে দেবে। বর্তমানে প্রায় সব ধরনের বাণিজ্যিক কাজকর্ম চলে ডিজিটালপ্রযুক্তির মাধ্যমে। তাই বিভিন্ন ধরনের কাজকর্ম এবং ব্যবসায়িক পদ্ধতিতে নতুনপ্রযুক্তি গ্রহন করতে হবে। এতকম সময়ে আমরা কিভাবে লক্ষ লক্ষ ক্ষুদ্র এবং মাঝারি শিল্পকে প্রযুক্তি ক্ষেত্রে এইপরিবর্তনের সঙ্গে মানিয়ে নিতে প্রস্তুত করে তুলতে পারি। উদ্ভাবনের গুরুত্বের কথামাথাই রেখে অর্থনৈতিক এবং ব্যবসার ভবিষ্যতের জন্য ভারত সরকার স্টার্ট-আপ ইন্ডিয়ানামে এক উদ্যোগ চালু করেছে। আমাদের বিশ্বাস যে আমাদের স্টার্ট-আপ ক্ষেত্র থেকেইসর্বত্র ব্যবহারের উপযোগী যথাযথ ও অর্থনৈতিক সমাধান পাওয়া যাবে। অটলউদ্ভাবনী মিশনের আওতায় আমরা ভারতের স্কুলগুলিতে অটল টিঙ্কারিং ল্যাব নামেগবেষণাগার গড়ে তুলছি। এই কর্মসূচির মূল লক্ষ্য হচ্ছে যুবকদের মনে সৃজনশীলতা,কল্পনা এবং ঔসুক্যকে উ ৎসাহিত করা। আমি নিশ্চিত যে আপনারা যখনতথ্যপ্রযুক্তির বিষয় নিয়ে আলাপ-আলোচনা করছেন সেই সময়ে আপনারা সাধারণ মানুষেরস্বার্থের বিষয়টি মাথায় রাখবেন। আমি আরও একবার এই সম্মেলনে উপস্হিত বিশিষ্টপ্রতিনিধিদের স্বাগত জানাচ্ছি। আপনাদের আলাপ-আলোচনা সার্থক হয়ে উঠুক। আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনাদের নমস্কার! গতবছর গরমের দোর্দণ্ড প্রতাপ, জলের অভাব, খরা পরিস্থিতি, এরকম কত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে হয়েছে। এটা একটা নতুন উৎসবের সঞ্চার করবে। আমি সকল কৃষক ভাইদের ভালো বৃষ্টির শুভকামনা জানাই। আমাদের দেশে কৃষকরা যেমন পরিশ্রম করেন, তেমনি বৈজ্ঞানিকেরা দেশকে এক নতুন উচ্চতায় নিয়ে যেতে সক্ষম হয়েছেন। আমি আজকেও এক খুশির কথা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতে চাই। গতকাল আমি পুনে গিয়েছিলাম, ‘স্মার্ট সিটি প্রজেক্ট’-এর প্রথম বর্ষপূর্তিতে সেখানে এক অনুষ্ঠানের আয়োজন হয়েছিল। সেখানে আমি পুনের ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজের সেই সকল ছাত্র-ছাত্রী – যাঁরা নিজেদের পরিশ্রমে একটি উপগ্রহ তৈরি করেছেন – ২২শে জুন যার সফল উৎক্ষেপণ হয়, ওই সব ছাত্র-ছাত্রীদের সাক্ষাতের জন্য ডেকে পাঠিয়েছিলাম। গত কয়েক বছর ধরে অনেক ছাত্র-ছাত্রী এই কাজে যোগ দিয়েছেন। এই অ্যাকাডেমিক স্যাটেলাইট-এর ব্যবহার আমাদের যুব সম্প্রদায়ের প্রতিভার এক জ্বলন্ত উদাহরণ। এটা আমাদের ছাত্র-ছাত্রীরা বানিয়েছেন। যেভাবে পুনের ছাত্ররা করে দেখিয়েছে, সেরকম তামিলনাড়ু-র চেন্নাইয়ের সত্যভামা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-ছাত্রীদের দ্বারা তৈরি সত্যভামা স্যাটেলাইট-এরও উৎক্ষেপণ হয়েছে। আমরা ছোটোবেলা থেকে এই কথা শুনে আসছি যে প্রত্যেক বালকের মনে আকাশকে ছোঁয়া আর কিছু তারাদের মুষ্টিগত করার ইচ্ছা সবসময় থাকে। আর এই পরিপ্রেক্ষিতে ইসরো দ্বারা উৎক্ষেপিত, ছাত্রদের দ্বারা বানানো এই দু’টি স্যাটেলাইট – আমি মনে করি অনেক গুরুত্ব বহন করে। এই ছাত্ররা অভিনন্দিত হওয়ার যোগ্য। আমি দেশবাসীকেও অনেক অনেক অভিনন্দন জানাতে চাই যে ২২-শে জুন ইসরোর বিজ্ঞানীরা একসঙ্গে ২০টি স্যাটেলাইট মহাকাশে পাঠিয়ে নিজেদের আগের রেকর্ডকে ভেঙে এক নতুন রেকর্ডের সৃষ্টি করেছেন। এটাও আনন্দের কথা যে, ভারত যে ২০-টি স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণ করেছে তার মধ্যে ১৭-টিই অন্য দেশের। আমার প্রিয় দেশবাসী, ‘বেটি বাঁচাও – বেটি পড়াও’ – এই শ্লোগান এখন ভারতবর্ষের প্রত্যেক মানুষের মনের কথা হয়ে উঠেছে। কিন্তু কিছু কিছু ঘটনা এতে নবজীবন নিয়ে আসে, নতুন প্রাণের সঞ্চার করে। আপনারা লক্ষ্য করেছেন এই তিন মহিলা ভারতবর্ষের কোনো মেট্রো শহরের নন। এঁরা নিজেদের রাজ্যের রাজধানীতেও বসবাস করেন না। এঁরা ছোটো শহরে থেকেও আকাশের মতো উঁচু স্বপ্ন দেখেছেন আর বাস্তবায়িতও করেছেন। আমি অবনী, মোহনা, ভাবনা – এই তিন কন্যাকে আর ওদের মা-বাবাকেও মন থেকে অনেক অনেক অভিনন্দন জানাই। আমার প্রিয় দেশবাসী, কিছুদিন আগে সারা বিশ্বে ২১-শে জুন ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’-এর প্রথম বর্ষপূর্তি উপলক্ষ্যে জাঁকজমকের সঙ্গে অনুষ্ঠান আয়োজিত হয়েছিল। যোগ-এর সঙ্গে যুক্ত একজন ভারতীয় হওয়ার সুবাদে আমরা অনুভব করি যে বিশ্ব আমাদের কাল – আজ আর আগামীকালের সঙ্গে সংযোজিত হচ্ছে। সমগ্র বিশ্বের সঙ্গে আমাদের এক মধুর সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে। ভারতবর্ষেও এক লক্ষের বেশি জায়গায় অনেক আশা আর উৎসাহের সঙ্গে, বিভিন্ন রঙ-বেরঙের অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আন্তর্জাতিক যোগ পরব পালিত হয়েছে। আমাকেও চণ্ডীগড়ে হাজার হাজার যোগ-প্রেমীদের সঙ্গে ওদের মাধ্যমে যোগাসন করার সুযোগ হয়েছে। আবাল-বৃদ্ধ সবার উৎসাহ চোখে পড়ার মতো। আপনারা হয়তো দেখেছেন, গত সপ্তাহে ভারত সরকার এই আন্তর্জাতিক যোগ পরব উপলক্ষেই ‘সূর্য নমস্কার’-এর এক ডাক টিকিটও প্রকাশ করেছে। আপনারাই বলুন, এই ঘটনা কোন্‌ ভারতীয়কে গৌরবান্বিত করবে না? সোশ্যাল মিডিয়ার এক নিজস্ব পরিচিতি হয়ে গেছে। এইবার ট্যুইটারে যোগা ইমেজ-এর সঙ্গে সেলিব্রেশনের ছোটোখাটো প্রয়োগও করেছে। সমগ্র বিশ্বকে সংযোগ করার ক্ষমতা যোগের মধ্যে রয়েছে। কেবল দরকার আমাদের যোগের মধ্যে নিজেদের সংযুক্ত হওয়ার। মধ্যপ্রদেশের সাতনা থেকে স্বাতী শ্রীবাস্তব যোগ দিবস পালিত হওয়ার পর আমাকে টেলিফোন করেছিলেন, উনি আপনাদের সকলের জন্য আমাকে একটি মেসেজ দিয়েছেন, কিন্তু আমার মনে হয়, ওই ম্যাসেজ আমার জন্য বেশি প্রাসঙ্গিক – আমি এটাও দেখেছি, বিশ্বে কিছু দেশ আছে যেখানে বিভিন্ন চ্যানেলে চব্বিশ ঘণ্টা যোগ সম্পর্কিত অনুষ্ঠান চলছে। আর আপনারা নিশ্চয়ই জানেন যে আমি জুন মাসে ‘আন্তর্জাতিক যোগ দিবস’ উপলক্ষে প্রত্যেক দিন ফেসবুক ও ট্যুইটার-এ একটি করে আসনের ভিডিও শেয়ার করতাম। যদি আপনারা আয়ুশ মন্ত্রণালয়ের ওয়েবসাইটে যান, তাহলে ৪০-৪৫ মিনিট পর্যন্ত একটির পর একটি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গের জন্য কী ধরণের যোগাসন করতে পারেন, সকল বয়সের যোগ করতে সমর্থ এরকম যোগাসন-এর ভিডিও-ও এই ওয়েবসাইটে পাবেন। আমি আপনাকে এবং আপনার মাধ্যমে যোগ সম্পর্কে উৎসাহী সবাইকে অনুরোধ করছি যে এই ওয়েবসাইট অবশ্যই দেখুন। রোগ থেকে মুক্তির একটি মাধ্যম হল যোগ। যোগব্যায়াম কি ডায়াবেটিস-কে নিয়ন্ত্রণ করতে পারে? কিছু মানুষ এতে উপকৃত হয়েছেন। সারাজীবনই এর জন্য ওষুধ খেয়ে যেতে হয়। এটি এমনই একটি রাজরোগ যা অন্য রোগেদের ডেকে আনে। কিছু ডায়াবেটিক রোগীও যোগাভ্যাস করে রোগকে আয়ত্তের মধ্যে রাখতে পেরেছেন। আসুন, আমরা নিজেদের অভিজ্ঞতা সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিই, যাতে এই রোগমুক্তির প্রক্রিয়া একটা গতি পায় এবং সারা বছর ধরে এব্যাপারে একটা সুন্দর পরিবেশ গড়ে তোলা যায়। আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, কখনও কখনও আমার ‘মন কি বাত’ নিয়ে খুব ঠাট্টা-তামাসা করা হয়। অনেক আলোচনাও হয় – এটা যে সম্ভব হয়, তার কারণ হল, আমরা গণতন্ত্রের প্রতি দায়বদ্ধ। নাগরিকদের সমস্ত অধিকার খর্ব করে দেওয়া হয়েছিল। দেশকে জেলখানা বানিয়ে দেওয়া হয়েছিল। জয়প্রকাশ নারায়ণ সহ দেশের লক্ষ লক্ষ মানুষকে, হাজার হাজার নেতাকে, বহু সংগঠনের কর্মীকে সেদিন কারাগারে ঢুকিয়ে দেওয়া হয়েছিল। সেই ভয়ঙ্কর ঘটনা নিয়ে বহু বই লেখা হয়েছে। অনেক আলোচনাও হয়েছে। কিন্তু আজ এই ২৬-শে জুন আমি যখন আপনাদের সঙ্গে কথা বলছি, তখন একথা যেন ভুলে না যাই যে, গণতন্ত্রই আমাদের শক্তি। এই দায়বদ্ধতাকে আমাদের এগিয়ে নিয়ে যেতে হবে, আরও শক্তিশালী করতে হবে। ভারতবাসীদের জোর এটাই যে তাঁরা দীর্ঘসময় গণতন্ত্রকে চালু রেখে দেখিয়েছেন। আমি প্রায়ই বলি যে ভাই, গণতন্ত্র মানে এ-ই নয় যে লোকে ভোট দেবে আর পাঁচ বছরের জন্য আপনাদের দেশ চালানোর কন্‌ট্র্যাক্ট দিয়ে দেবে। জনতা আর সরকারের মধ্যে মতানৈক্যই আমাদের ধ্বংসে মদত দিয়েছে। আমার সবসময়েই চেষ্টা রয়েছে যাতে জনতার অংশগ্রহণের মাধ্যমেই দেশ এগিয়ে চলতে পারে। সম্প্রতি যখন আমার সরকারের দু’বছর পূর্ণ হল তখন কিছু আধুনিক বুদ্ধিসম্পন্ন তরুণ আমাকে পরামর্শ দিয়েছেন, আপনি তো এতবড় গণতন্ত্রের কথা বলেন, তাহলে আপনার সরকারের মূল্যাঙ্কণ আপনি সাধারণ মানুষেকে দিয়ে করাচ্ছেন না কেন? এটা একাধারে তাঁদের চ্যালেঞ্জ যেমন ছিল তেমনি পরামর্শও ছিল। এই বিষয়টা আমাকে নাড়িয়ে দিয়েছিল। এখন তো প্রযুক্তি এতটাই বদলে গেছে যে কেউ যদি একজোট হয়ে প্রযুক্তির অপব্যবহার করে তো সেই surveyকে যে কোথা থেকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে, তার কোন ঠিকঠিকানা নেই’। আমার প্রিয় দেশবাসীরা, খুশির কথা এটাই যে, আমি যখন প্রযুক্তির মাধ্যমে আলাদা আলাদা ভাষায় জনগণকে আমার সরকারের মূল্যাঙ্কণ করার জন্য আহ্বান জানালাম, তখন নির্বাচনের পরেও বহু সার্ভে হল, ভোটের সময়েও সার্ভে হল, কখনও কখনও কিছু বিষয়ে এর মধ্যেও সার্ভে হল, সার্ভে হল জনপ্রিয়তা নিয়েও – তবে এর কোনটিরই স্যাম্পল সাইজ খুব বড় নয়। যদিও লক্ষ লক্ষ লোক এতে আগ্রহ দেখিয়েছেন, কিন্তু তিন লক্ষ মানুষ এক-একটি উত্তর দেওয়ার জন্য পরিশ্রম করেছেন, অনেক সময় বার করেছেন। আমি ওই তিন লক্ষ মানুষের কাছে কৃতজ্ঞ যে, তাঁরা সক্রিয়ভাবে সরকারের মূল্যাঙ্কণ করেছেন। কিন্তু এটা তো আমি নিশ্চয়ই বলবো যে এটি একটি ভালো উদ্যোগ ছিল। আমার জন্যেও খুশির কথা এটাই যে, ভারতের বিভিন্ন ভাষাভাষী মানুষ, বিভিন্ন প্রান্তে বসবাসকারী এবং বিভিন্ন অবস্থানের মানুষ এতে অংশ নিয়েছেন। আমার জন্য সবচেয়ে বড় আশ্চর্যের বিষয় এটাই যে, ভারত সরকারের গ্রামীণ রোজগার যোজনার যে ওয়েবসাইট আছে, সেই পোর্টালে সবথেকে বেশি লোক উৎসাহের সঙ্গে অংশগ্রহণ করেছে। আমার প্রাথমিক অনুমান, দরিদ্র গ্রামীণ মানুষ এতে সক্রিয়ভাবে যোগ দিয়েছেন। এটাই আমার আরও বেশি ভালো লেগেছে। এটাই তো গণতন্ত্রের শক্তি। আমার প্রিয় দেশবাসীগণ, আজ আমি একটি বিষয় আপনাদের জানাতে চাই। সে একটা সময় ছিল, যখন কর এত বেশি ছিল যে, কর ফাঁকি দেওয়া মানুষের স্বভাব হয়ে গিয়েছিল। একটা সময় ছিল যখন বিদেশী জিনিস আনার ব্যাপারে অনেক বিধিনিষেধ ছিল, তাতে চোরাচালানও খুব বেড়ে গিয়েছিল । কিন্তু ধীরে ধীরে সময়ের পরিবর্তন হয়েছে। এখন করদাতাদের সরকারি কর ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হওয়ায় আর কোনো অসুবিধা নেই। তাও পুরনো অভ্যাস সহজে যায় না। এক শ্রেণির এখনও ধারণা হল, সরকার থেকে দূরে থাকাই শ্রেয়। আমার মনে হয়, নিয়মের আওতা থেকে পালিয়ে গিয়ে আমরা আমাদের সুখ-শান্তি বিসর্জন দিই। তখন যে কোনও সামান্য মানুষও আমাদের বিব্রত করতে পারে। আমরা কেন এরকম হতে দেবো? এই বোঝা থেকে মুক্ত হওয়ার জন্য আমি দেশবাসীকে আহ্বান জানাচ্ছি। যাঁদের কাছে অঘোষিত আয় আছে, তাঁদের জন্য ভারত সরকার একটা সুযোগ দিয়েছে – আপনি আপনার অঘোষিত আয় ঘোষণা করে দিন। সরকার ৩০শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত অঘোষিত আয় ঘোষণা করার বিশেষ সুযোগ দিয়েছে। জরিমানা দিয়ে আমরা অনেক রকম বোঝা থেকে মুক্ত হতে পারি। আমি কথা দিয়েছি, যাঁরা স্বেচ্ছায় নিজেদের অঘোষিত সম্পত্তি ও আয়ের বিবরণ দিয়ে দেবেন, তাঁদের ক্ষেত্রে সরকারের পক্ষ থেকে আর কোনও রকম তদন্ত হবে না। এত টাকা কোথা থেকে এলো, কীভাবে এলো, একবারও তা জিজ্ঞাসা করা হবে না। সেইজন্যই আমি বলছি, এটা একটা ভালো সুযোগ, আপনি এই স্বচ্ছ ব্যবস্থার অংশীদার হয়ে যান। এইসঙ্গে আমি দেশবাসীকে এটাও বলতে চাই যে, ৩০-শে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত এই প্রকল্প চলবে এবং এটাকে শেষ সুযোগ বলে ধরে নিতে পারেন। আমি এর মধ্যে আমার সাংসদদেরও বলে দিয়েছি যে, ৩০-শে সেপ্টেম্বরের পর যদি কোন নাগরিকের কোনও অসুবিধা হয়, যিনি এই ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত হতে চাননি, তাঁকে কোনও রকম সাহায্য করা যাবে না। আমি দেশবাসীদেরও বলতে চাই, ৩০-শে সেপ্টেম্বরের পর এমন কিছু না হোক যাতে আপনাদের কোনও কষ্ট হয়। এইজন্যই আমি বলছি, ৩০-শে সেপ্টেম্বরের আগেই আপনারা এই ব্যবস্থার সদ্ব্যবহার করুন এবং ৩০-শে সেপ্টেম্বরের পরের সম্ভাব্য অসুবিধা থেকে নিজেদের বাঁচান। যদি নাগরিকেরা নিয়মের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হতে চান তাহলে তাঁদের উৎসাহ ও ভালোবাসা দিয়ে সঙ্গে করে এগিয়ে চলুন। বিশ্বাসের একটি পরিবেশ সৃষ্টি করা দরকার। আমাদের আচরণের মধ্যে পরিবর্তন আনা প্রয়োজন। করদাতাদের মধ্যে বিশ্বাসের পরিবেশ সৃষ্টি করতে হবে। যখন আমি আগ্রহ সহকারে কথাগুলি বলেছিলাম, তখন লক্ষ্য করলাম যে আধিকারিকরাও এই রকমই ভাবছেন যে আজ দেশ যখন অগ্রগতির পথে চলেছে তখন সবাইকে যথাসম্ভব যোগদান করতে হবে। আধিকারিকদের সঙ্গে যখন মত বিনিময় করছিলাম তখন আমি একটি তথ্য জানতে পারি, যা আমি আপনাদের জানাতে চাই। বড়ো বড়ো শহরে পঞ্চাশ লক্ষ টাকার বেশি করযোগ্য আয়ের লক্ষ লক্ষ মানুষ আছেন। এক কোটি – দু’কোটি টাকা মূল্যের বাংলো দেখে বোঝা যায় না, এঁরা কীভাবে পঞ্চাশ লক্ষ টাকা সীমার করযোগ্য আয়ের মধ্যে পড়েন। সরকারের পক্ষ থেকে কোনও কঠোর পদক্ষেপ নেওয়ার আগে জনসাধারণকে কিছু সুযোগ দেওয়া দরকার। আমার প্রিয় ভাই-বোনেরা, অঘোষিত উপার্জন প্রকাশ করার এটা একটা সুবর্ণ সুযোগ। অন্য ভাবে বললে ৩০-শে সেপ্টেম্বরের পর বিপদ থেকে মুক্তির সহজ রাস্তা। আমার প্রিয় দেশবাসী, এই দেশের সাধারণ মানুষ দেশের ভালোর জন্য কিছু করার সুযোগের অপেক্ষায় থাকেন। আমি যখন রান্নার গ্যাসের ভর্তুকি ছাড়ার জন্য আবেদন করেছিলাম, তখন দেশের এককোটিরও অধিক পরিবার ভর্তুকি ছেড়ে দিয়েছেন। আমি বিশেষ করে যাঁদের কাছে অঘোষিত আয় আছে, তাঁদের জন্য একটি বিশেষ দৃষ্টান্ত স্থাপন করতে চাই। আপনারা কি জানেন কারণটা কী? এই চন্দ্রকান্ত কুলকার্ণি একজন সাধারণ মধ্যবিত্ত পরিবারের মানুষ। সরকারী চাকুরি করতেন। অবসর নিয়েছেন। উনি ১৬,০০০ টাকা পেনশন পান। আমার প্রিয় দেশবাসী, আপনারা শুনে আশ্চর্যান্বিত হবেন আর যাঁরা কর ফাঁকিতে অভ্যস্ত, তাঁরাও বড়োই আঘাত পাবেন যে, শ্রী চন্দ্রকান্ত কুলকার্ণি – যিনি মাত্র ১৬,০০০ টাকা পেনশন পান, তিনিই কিছুদিন আগে আমাকে চিঠি লিখে জানিয়েছিলেন যে প্রতি মাসের পেনশন থেকে ৫,০০০ টাকা করে ‘স্বচ্ছতা অভিযান’-এর জন্য দান করতে চান। শুধু তাই নয়, উনি আমাকে ৫২টি পোস্ট-ডেটেড চেক পাঠিয়ে দিয়েছেন। আসুন, আমরা সবাই মন থেকে সব দ্বিধা কাটিয়ে ফেলি, সবাই ভাবি সরকার আমাদের উপার্জন ঘোষণা করার একটা সুযোগ দিয়েছেন। চন্দ্রকান্ত বাবুর কথা স্মরণ করে আমরাও এর সঙ্গে নিজেদের যুক্ত করি। আমার প্রিয় দেশবাসী, উত্তরাখণ্ডের পৌড়ী গাড়োয়াল থেকে শ্রী সন্তোষ নেগি ফোনে নিজের এক অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন। জল সঞ্চয় বিষয়ে তিনি আমাকে একটি খবর দিয়েছেন। তার এই অভিজ্ঞতা আমার মনে হয় দেশবাসীর কাজে আসবে। ‘আপনার উৎসাহে আমি আমাদের বিদ্যালয়ে বর্ষা শুরু হওয়ার আগে খেলার মাঠের চার পাশে চার ফুটের ছোটো ছোটো ২৫০টি গর্ত বানিয়ে দিয়েছিলাম যাতে সেই জল জমা হয়। পৌড়ী গাড়োয়ালের মত একটি পাহাড়ি ক্ষেত্রে আপনি এধরনের কাজ করেছেন। আপনি ধন্যবাদের যোগ্য। আমার বিশ্বাস দেশবাসী বৃষ্টির আনন্দ উপভোগ করুন। এটি ঈশ্বরের দেওয়া প্রসাদ – অনন্ত সম্পত্তি। প্রতিটি ফোঁটা জল সংরক্ষণের জন্য আমাদের সচেষ্ট হতে হবে। গ্রামের জল গ্রামে, শহরের জল শহরে কীভাবে আটকে রাখব? ধরিত্রী মাতাকে পুনরায় রি-চার্জ করার জন্য আমরা আবার ঐ জলকে কীভাবে মাটির মধ্যে ফেরত পাঠাব? প্রতিটি রাজ্য জল সঞ্চয় নিয়ে অনেক প্রকল্প তৈরি করেছে। এখন বৃষ্টি যখন এসেছে, তখন লক্ষ্য রাখুন – জল যেন নষ্ট না হয়। জীবন বাঁচানোর জন্য আমরা যতটা চিন্তিত, জল বাঁচানোর জন্য আমাদের ততটাই চিন্তিত থাকতে হবে। এই ১৯২২ একটি এমন নম্বর, যাতে মিস্‌ড কল করে আপনি আপনার পছন্দের ভাষায় ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শুনতে পারেন। আপনার সময় মত নিজের ভাষায় ‘মন কি বাত’ অনুষ্ঠান শুনে দেশের উন্নয়নে যোগদানে সচেষ্ট হন। কিন্তু, সন্ত্রাসবাদের পরিবর্তিত চেহারাও এখন আমাদের সামনে স্পষ্ট।বিশ্বব্যাপী যোগাযোগ, এজেন্টের মাধ্যমে সম্পর্ক স্থাপন, দেশের ভেতরে উদ্ভূত সন্ত্রাসবাদ পরিস্থিতি এবং সাইবার জগৎ’কে সন্ত্রাসবাদের প্রচার মাধ্যম হিসেবে ব্যবহারের ঘটনা এখন আমরা প্রত্যক্ষ করছি। সমস্ত রকমের রাজনৈতিক ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে আমাদের এখন ঐক্যবদ্ধভাবে একযোগে সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে হবে। সন্ত্রাসবাদী গোষ্ঠীগুলির মধ্যে কোনও বৈষম্য করা চলবে না।একইভাবে, রাষ্ট্রগুলির মধ্যেও যেন কোনও রকম বৈষম্য বা মতভেদ না থাকে। সন্ত্রাসবাদকে যারা সমর্থন করে ও মদত দেয়, আমাদের উচিৎ তাদের পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন করে দেওয়া।একইসঙ্গে যাঁরা মানবতার মূল্যবোধে অনুপ্রাণিত হয়ে আমাদের সমান অংশীদার তাঁদের পাশে দাঁড়াতে হবে আমাদের। সন্ত্রাসবাদের এই অদ্ভূত চ্যালেঞ্জের মোকাবিলার লক্ষ্যে আন্তর্জাতিক আইনি কাঠামোর পুনর্বিন্যাসের দায়িত্বও আমাদের। অনতিবিলম্বেই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসবাদ সম্পর্কে আমাদের এক সুসংবদ্ধ আলাপ-আলোচনার লক্ষ্যে এগিয়ে যাওয়া উচিৎ। গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা এবং সন্ত্রাসবাদ বিরোধী তৎপরতা আরও জোরদার করে তুলতে হবে। সন্ত্রাসবাদীদের কাছে অস্ত্রশস্ত্রের জোগান যে কোনও উপায়েই বন্ধ করা প্রয়োজন।সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপকে ধ্বংস করতে হবে এবং সন্ত্রাসবাদমূলক যে কোনও অপরাধমূলক কাজকর্মে অর্থ যোগান দেওয়ার প্রবণতাও রোধ করতে হবে। সাইবার জগৎ’কে সুরক্ষিত করে তুলতে আমাদের উচিৎ একে অপরের সাহায্যে এগিয়ে যাওয়া।সেইসঙ্গে, সন্ত্রাসবাদী কাজকর্মের উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট ও সোশ্যাল মিডিয়া যাতে ব্যবহার না করা হয়, সেদিকেও আমাদের লক্ষ্য রাখতে হবে। ধর্ম থেকে সন্ত্রাসবাদকে বিচ্ছিন্ন করতে হবে।উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে একজোট হতে হবে সকলকেই। একইসঙ্গে সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ পশ্চিম এশিয়া ও আফ্রিকায় শান্তি ও স্থিতাবস্থার বাতাবরণকে শক্তপোক্ত করে তোলা। বর্তমানে শরণার্থী সমস্যার যে চিত্র আমরা দেখতে পাচ্ছি, তার সমাধানেও এই ব্যবস্থা বিশেষভাবে জরুরি। আজকের দিনে সারা পৃথিবীর ৬ কোটি মানুষ এখন নিরাশ্রয় এবং নিরাপত্তা ও সুরক্ষাপ্রার্থী। যে দেশগুলি তাদের সীমান্ত দিয়ে শরণার্থীদের আসার পথ সহজ করে দিয়েছে এবং তাঁদের আশ্রয় দিয়েছে, তাদের আমি ধন্যবাদ জানাই। উন্নয়নের লক্ষ্যে জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষার কথা তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উন্নয়নের প্রথম শর্তটিই হল উন্নত সড়ক ব্যবস্থা। এই এক্সপ্রেসওয়েটি নির্মিত হলে উত্তরপ্রদেশের পশ্চিমাঞ্চলের উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে বলে তিনি মনে করেন। সুবর্ণ চতুর্ভুজ প্রকল্প এবং প্রধানমন্ত্রী গ্রাম সড়ক যোজনার মধ্য দিয়ে ভারতকে যুক্ত করার যে স্বপ্ন প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী দেখেছিলেন তাও স্মরণ করেন তিনি। কৃষকদের কাছে উপযুক্ত সেচের সুযোগ যাতে পৌঁছে দেওয়া যায় সেই লক্ষ্যে কৃষি সিচাঁই যোজনা সহ কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের কথা তিনি বিবৃত করেন অনুষ্ঠানে। কেন্দ্রীয় সরকারের তৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণীর পদগুলিতে সাক্ষাৎকার প্রথা তুলে দেওয়ার বিষয়টির অবতারণা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৬-র প্রথম দিন থেকেই দেশের যুব সমাজের কাছে এটি হবে তাঁর সরকারের এক অনবদ্য উপহার। সবক’টি রাজনৈতিক দলকে উদ্দেশ্য করে সংসদের কাজকর্ম সচল রাখতে এবং দরিদ্র-কল্যাণে কাজ করে যাওয়ার লক্ষ্যে ২০১৬-তে শপথ ও সঙ্কল্প গ্রহণের আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী অন্ধ্রপ্রদেশের অনন্তপুর জেলার কাছে ব্যাঙ্গালোর সিটি-নানদেদ এক্সপ্রেস ট্রেন দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেন | “ব্যাঙ্গালোর সিটি-নানদেদ এক্সপ্রেসের দুর্ভাগ্যজনিত দুর্ঘটনায় যারা মারা গিয়েছেন, তাদের পরিবারদের জন্য আমি সমব্যথী | কর্ণাটকের বিধায়ক শ্রী ভেঙ্কটেশ নায়েক-এর পরিবারের প্রতি শোক জ্ঞাপন করছি। উল্লেখ করা যেতে পারে, গত জুন মাসে দু’দেশের মধ্যে এই মউ স্বাক্ষরিত হয়েছিল। স্বাক্ষরিত মউ অনুযায়ী ভারতের ডাকবিভাগ এবং আর্মেনিয়ার জাতীয় পোর্টাল অপারেটর ‘নৃত্য’ সম্পর্কিত বিষয়ের ওপর যৌথভাবে ডাকটিকিট প্রকাশে সম্মত হয়েছে। যৌথ উদ্যোগের ডাকটিকিটগুলি গত আগস্ট মাসে প্রকাশ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মহারাষ্ট্রের রায়গড় জেলায় বাস দুর্ঘটনায় বহু মানুষের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন। নয়া দিল্লি: ৩০ সেপ্টেম্বর: বিজয়া দশমীরপুণ্য লগ্নে অনেক অনেক শুভেচ্ছা| উত্সব এক দিক দিয়ে আমাদের সামাজিক মূল্যবোধেরপ্রতিফলন এবং এক ধরনের সামাজিক শিক্ষার মাধ্যম| প্রতিটি উত্সব আমাদের সমষ্টিগত শক্তি প্রদর্শনেরপ্রথাকে এগিয়ে নিয়ে যায়, আমাদের সামাজিক দায়িত্বের প্রতি সংবেদনশীল করে তোলে এবংসমাজের সমস্ত অপশক্তির বিরুদ্ধে লড়াইয়ে অক্লান্তভাবে কাজ করে যাওয়াকে চালিত করে| আমাদের উত্সবের সঙ্গে কৃষি ও ফসল কেটে ঘরে তোলা, নদীও পর্বত, আমাদের ইতিহাস ও আমাদের সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যও যুক্ত রয়েছে| সবাইকে অনেক অনেক শুভেচ্ছা| সদ্য সমাপ্ত কমনওয়েল্‌থ গেমসে পদক জয়ী ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে সোমবার এক আলাপচারিতায় মিলিত হলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী এই গেমসে পদক জয়ী ক্রীড়াবিদদের অভিনন্দন জানান এবং যাঁরা পদক পাননি, তাঁদের ক্রীড়া নৈপুণ্যের প্রশংসা করেন। বিশ্ব ক্রীড়া আঙিনায় যখনই কোনও ভারতীয় খেলোয়াড় জয়ী হন, তখনই ভারতের পতাকা ঊর্ধ্বে ওঠে। শ্রী মোদী আরও বলেন, বর্তমানে একজন অ্যাথলিটের খেলোয়াড় জীবন কয়েক দশক পর্যন্ত বিস্তৃত। এ প্রসঙ্গে তিনি সংসদ সদস্য মেরি কম-এর উদাহরণ দেন যিনি এখনও আন্তর্জাতিক ক্রীড়ায় স্বর্ণ পদক জিতে চলেছেন। এ প্রসঙ্গে পুল্লেলা গোপীচাঁদের উদাহরণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ব্যাপক সাফল্যমণ্ডিত খেলোয়াড়ী জীবন শেষে তিনি এখন বিভিন্ন ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষণ ও দেখাশোনায় যুক্ত রয়েছেন। বর্তমান ক্রীড়াবিদদের জন্য মেধা, প্রশিক্ষণ, একাগ্রতা ও কঠোর পরিশ্রমের পাশাপাশি মানসিক শক্তিও অত্যন্ত জরুরি বলে শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি যোগাভ্যাসের উপকারিতার কথা উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী প্রত্যেক ক্রীড়াবিদকে তাঁদের শৈশবের গুরু, পৃষ্ঠপোষক ও প্রশিক্ষকদের কথা স্মরণে রেখে এঁদের সঙ্গে যোগাযোগ রাখার আর্জি জানান। সরকারি প্রশাসন ওপরিচালনকে দক্ষতর করে তুলতে এবং কর্মসূচি রূপায়ণ ও নজরদারি কাঠামোকে আরও শক্তিশালীকরে তুলতে জাতীয় দক্ষতা বিকাশ তহবিল (এনএসডিএফ) এবং জাতীয় দক্ষতা বিকাশ নিগম(এনএসডিসি)-এর পুনর্গঠন প্রস্তাবে সম্মতি দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। ভারতের রাষ্ট্রপতি, বিচারপতি রঞ্জন গগৈকে দেশের পরবর্তী প্রধান বিচারপতি নিয়োগ করেছেন। বর্তমান, প্রধান বিচারপতি দীপক মিশ্রের অবসরগ্রহনের পর, বিচারপতি গগৈ আগামী তেশরা অক্টোবর প্রধান বিচারপতির দায়িত্বভার গ্রহণ করবেন। গুয়াহাটি হাইকোর্টে সংবিধান কর আরোপ এবং কোম্পানী সংক্রান্ত বিষয়ে তিনি প্র্যাকটিস শুরু করেন। ২০০১-এর ২৪ ফেব্রুয়ারি তিনি গুয়াহাটি হাইকোর্টের স্হায়ী বিচারপতি নিযুক্ত হন। বিচারপতি গগৈকে ২০১০-র ৯ সেপ্টেম্বর পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টে বদলি করা হয়। ২০১১-র ১২ ফেব্রুয়ারি তিনি পাঞ্জাব ও হরিয়ানা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। দুই পক্ষেরই লক্ষ্য হচ্ছে নবীন ও পুনর্নবীকরণ বিদ্যুত নিয়েপারস্পরিক সুবিধার ওপর ভিত্তি করে প্রযুক্তিগত দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে এগিয়ে নিয়ে যেতেও উত্সাহিত করতে সহযোগিতার প্রাতিষ্ঠানিক সম্পর্কের জন্য ভিত্তি প্রস্তুত করা| জম্মু ও কাশ্মীরের নিয়ন্ত্রণরেখার অদূরে গুরেজ উপত্যকায় ভারতীয় সেনা ওজওয়ানদের সঙ্গে বৃহস্পতিবার দিওয়ালি উদযাপন করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদী। তিনি তাঁদের সঙ্গে প্রায় দু’ঘন্টার মতো সময় অতিবাহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর সেনা ও জওয়ানদের সঙ্গে সময় অতিবাহিতকরলে তিনি নতুন করে উৎসাহ ও উদ্দীপনা লাভ করেন। এই বিশেষ অভ্যাসটি যে তাঁদের নিশ্চিতভাবেই ক্ষমতা ও দক্ষতাকে আরওবাড়িয়ে তুলবে এবং স্থির মস্তিষ্কে কাজ করে যেতে অনুপ্রাণিত করবে – তাঁর এইবিশ্বাসের কথাও প্রধানমন্ত্রী ব্যক্ত করেন জওয়ানদের কাছে। নির্দিষ্ট কার্যকালেরমেয়াদ শেষে জওয়ানরা যখন সশস্ত্র বাহিনী ছেড়ে চলে যাবেন, তখন তাঁরা যথার্থ যোগপ্রশিক্ষক হয়ে উঠতে পারবেন বলেই তাঁর ধারণা। আগামী ২০২২ সালে দেশের ৭৫তম স্বাধীনতা উৎসব উদযাপনের জন্য দেশের প্রত্যেকনাগরিক যে এক নতুন সংকল্প গ্রহণে উদ্বুদ্ধ হবেন, এ বিষয়ে তাঁর দৃঢ় বিশ্বাসের কথাব্যক্ত করেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। জওয়ানদের উদ্ভাবন প্রচেষ্টার ওপর বিশেষ জোর দিয়েতিনি বলেন যে, এই বিষয়টিতে আগ্রহী হয়ে উঠলে তাঁরা তাঁদের দৈনন্দিন কাজকর্মকে অনেকসহজ ও নিরাপদ করে তুলতে পারবেন। সেনা দিবস, নৌ-সেনা দিবস এবং বিমানবাহিনী দিবস-এশ্রেষ্ঠ উদ্ভাবন প্রচেষ্টাগুলিকে কিভাবে স্বীকৃতি দেওয়া হয় ও পুরস্কৃত করা হয়,সেকথারও প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সশস্ত্র বাহিনীর কল্যাণে কেন্দ্রীয় সরকার সর্বতোভাবেসংকল্পবদ্ধ। এই প্রসঙ্গে বহু দশক ধরে ঝুলে থাকা ‘এক পদ, এক পেনশন’ নীতি রূপায়ণেরবিষয়টিও তিনি তাঁর বক্তব্যে তুলে ধরেন। ভারতীয় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল বিপিন রাওয়াত ও অন্যান্য পদস্থ সেনাআধিকারিকরাও উপস্থিত ছিলেন প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য পেশকালে। আপনাদের সঙ্গে দিওয়ালি উৎসব উদযাপনের সুযোগ আমি পেয়েছি। উৎসবের এই মরশুমেসীমান্তে বীর জওয়ানদের উপস্থিতি আশাদীপকে প্রজ্জ্বলিত করে এবং কোটি কোটি ভারতবাসীরমধ্যে সঞ্চারিত করে নতুন উৎসাহ ও উদ্যম। এক ‘নতুন ভারত’ গঠনের স্বপ্নকে সফল করে তোলার লক্ষ্যে আমাদের সকলের এক যোগেকাজ করে যাওয়ার সুবর্ণ সুযোগ এখন উপস্থিত। দেশের সেনাবাহিনীও এই সংকল্পসাধনেরয়েছেন আমাদের সঙ্গেই। দিওয়ালি উপলক্ষে আপনাদের সকলকে অভিনন্দন”। ভারতরত্নএম বিশ্বেশ্বরাইয়ার জন্মবার্ষিকীতে তাঁকে শ্রদ্ধা জানাই। একবিকল্প ব্যবস্থার মাধ্যমে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণের প্রস্তাবে আজনীতিগতভাবে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। রাষ্ট্রায়ত্তব্যাঙ্কগুলির সংযুক্তিকরণের লক্ষ্যে বিকল্প ব্যবস্থার উল্লেখযোগ্য দিকগুলি হল : · শক্তিশালীএবং প্রতিযোগিতামুখী ব্যাঙ্ক গড়ে তোলার সিদ্ধান্ত বাণিজ্যিক চিন্তাভাবনা অনুসরণকরেই গ্রহণ করা হচ্ছে । · ব্যাঙ্কপর্ষদগুলির পক্ষ থেকে এজন্য প্রথমেই কাজ শুরু করা প্রয়োজন। · নীতিগতঅনুমোদনের জন্য ব্যাঙ্কগুলির কাছ থেকে পাওয়া সংযুক্তিকরণ প্রস্তাব পেশ করা হবেবিকল্প ব্যবস্থা গড়ে তোলার সঙ্গে যুক্ত কর্তৃপক্ষের কাছে। · নীতিগতঅনুমোদনের পর প্রচলিত আইন এবং সেবির নীতি-নির্দেশিকা অনুসরণ করে পরবর্তী পদক্ষেপগ্রহণ করা হবে ব্যাঙ্কগুলির পক্ষ থেকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা সন্ত্রাসবাদ মোকাবিলায় ভারত ও মরক্কোর মধ্যে যৌথ কর্মীগোষ্ঠী গড়ে তোলার ব্যাপারে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরে অনুমোদন দিয়েছে। সন্ত্রাস মোকাবিলায় এই কর্মীগোষ্ঠী গঠনের ফলে সন্ত্রাসবাদী আক্রমন সংক্রান্ত হামলা নিষ্পত্তিতে তা সহায়ক হবে। ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি যৌথ কমিটি গড়ে তোলার উদ্দেশ্যে স্বাক্ষরিত এক সমঝোতা সম্পর্কে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে অবহিত করা হয়েছে। ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে শীর্ষস্থানীয় এই যৌথ কমিটি গড়ার লক্ষ্যে নতুন দিল্লিতে গত ২৫শে জানুয়ারি, ২০১৬ তারিখে ঐ সমঝোতা স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতা অনুযায়ী বিজ্ঞান, প্রযুক্তি এবং গবেষণা, বিকাশ ও উদ্ভাবনের মাধ্যমে অর্থনৈতিক ও সামজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে গৃহীত উদ্ভাবনী প্রয়াস সম্পর্কে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যে সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলি চিহ্নিত করা, তালমিল ঘটানো এবং অগ্রাধিকারের বিষয়গুলি খুঁজে নেওয়ার জন্য এই যৌথ কমিটি কাজ করবে। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০২২ সাল নাগাদ প্রত্যেক গৃহহীন ব্যক্তিকে নিজস্ব গৃহ প্রদানের লক্ষ্যে সরকার দ্রুতগতিতে কাজ করে চলেছে। তিনি আরও জানান, বর্তমান সরকারের আওতায় গৃহ নির্মাণ থেকে গৃহ প্রদান সমগ্র প্রক্রিয়ায় স্বচ্ছতা বজায় রাখা হয়েছে। সদিচ্ছা নিয়ে যখন একটি সরকার নীতি প্রণয়ন করে, তখন স্বাভাবিকভাবেই দুর্নীতি দূর করা সম্ভব হয় এবং এর ভালো পরিণামও পাওয়া যায়। শ্রী মোদী বলেন, রিয়েল এস্টেট নিয়ামক কর্তৃপক্ষ বা রেরা গ্রাহক ও রিয়েল এস্টেট ডেভেলপারদের মধ্যে আস্থার বন্ধনকে আরও মজবুত করেছে। এ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী আবাসন নির্মাণ সংক্রান্ত অনুমোদন সহ বিভিন্ন সরকারি ছাড়পত্র আগের তুলনায় এখন অনেক দ্রুত মঞ্জুর করা হচ্ছে বলেও জানান। আবাসন শিল্প তথা গৃহ-ক্রেতাদের বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা প্রদানে কেন্দ্রীয় সরকারের গৃহীত কর ক্ষেত্রে সংস্কারের কথাও প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। আবাসন নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত বিভিন্ন সামগ্রীর ক্ষেত্রে জিএসটি’র হার কমানো হয়েছে। সদ্য অন্তর্বর্তী বাজেটে মধ্যবিত্ত শ্রেণীর জন্য আয়ের ক্ষেত্রে করের একাধিক সুবিধা দেওয়ার কথা ঘোষণা করা হয়েছে। বাজেট ঘোষিত উদ্যোগগুলি কার্যকর হলে আবাসন ক্ষেত্র ও গৃহ-ক্রেতারা উপকৃত হবেন বলে তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। সাধারণ মানুষের জন্য নিজস্ব বাড়ির স্বপ্ন পূরণে প্রধানমন্ত্রী ক্রিডাই-এর অবদানের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, ক্রিডাই ইয়ুথকন সম্মেলন এমন এক সময়ে আয়োজিত হচ্ছে, যখন ‘নতুন ভারত’ গড়ে উঠতে চলেছে। এই নতুন ভারত গঠনের দেশের যুবসম্প্রদায়ের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে বলেও শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে কেনিয়ার প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী তথা বিরোধী দলনেতা শ্রী রাইলা ওডিঙ্গা আজ নতুন দিল্লীতে সাক্ষাৎ করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী এক দশকেরও বেশি সময় আগে গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী থাকাকালিন তাঁর কেনিয়া সফর ও তাদের মধ্যে সুদীর্ঘ সম্পর্কের কথা বিশেষভাবে স্মরণ করেন। শ্রী ওডিঙ্গাও ২০০৯ ও ২০১২-তে তাঁর ভারত সফরের কথা উল্লেখ করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী দেশের বিভিন্ন অংশের কলেজ পড়ুয়াদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। প্রকাশ্য স্থানে শৌচকর্ম বর্জিত রাজ্য হয়ে ওঠায় শ্রী মোদী জম্মু-কাশ্মীরের মানুষকে অভিনন্দন জানান।উল্লেখ করা যেতে পারে, গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসেই জম্মু-কাশ্মীর প্রকাশ্য স্থানে শৌচকর্ম বর্জিত রাজ্যের স্বীকৃতি পায়। সংযুক্ত আরব-আমিরশাহির যুবরাজের রাষ্ট্রীয় ভারত সফরকালে নয়া দিল্লিতে এই চুক্তিটি সম্পাদিত হয়। শুধু তাই নয়, নতুন ও পুনর্নর্বীকরনযোগ্য জ্বালানি ক্ষেত্রে প্রযুক্তিগত সহযোগিতা প্রসারও এই চুক্তিটির অন্যতম উদ্দেশ্য। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ঈদ-এ-মিলাদ-উন-নবি উপলক্ষে দেশবাসীর প্রতি শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী এক শুভেচ্ছাবার্তায় বলেছেন, “ঈদ-এ-মিলাদ-উন-নবি উপলক্ষে আমি আপনাদের সবাইকে শুভেচ্ছা জানাই। এই উৎসব যেন সৌভ্রাতৃত্ব এবং সমাজে ভালোবাসার বন্ধনকে আরও গভীর করে তোলে।” দীনদয়ালজির পথ অনুসরণ করে ভারত’কে উন্নয়ন ও ন্যায়ের শীর্ষে আমরা নিয়ে যেতে পারি। পরিদর্শন করেন বুদ্ধগয়াও। বৈঠক শেষে প্রেসিডেন্ট কোয়াং এবং প্রধানমন্ত্রী মোদী দু’দেশের মধ্যে পরমাণুশক্তি, বাণিজ্য, কৃষি ও মৎস্যচাষ সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে চুক্তি বিনিময় অনুষ্ঠানটিপ্রত্যক্ষ করেন। জাতির জনকমহাত্মা গান্ধী এবং ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট হো চি মিন-এর হাত ধরে ভারত ওভিয়েতনামের মধ্যে যে মৈত্রী সম্পর্কের সূচনা হয়েছিল, সেই প্রসঙ্গের অবতারণা করেদুটি দেশই স্বীকার করে যে পরবর্তী প্রজন্মের নেতৃবৃন্দ এবং জনসাধারণ এইদ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে আরও প্রসারিত করে তুলেছে। এই উপলক্ষে ভারতে ভিয়েতনাম দিবস পালনের যে উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়তার উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট। দ্বিপাক্ষিকসম্পর্কের এই ক্রমপ্রসারকে নিরন্তর রাখতে নিয়মিতভাবে দ্বিপাক্ষিকসফরসূচি বিনিময়েরওপর বিশেষ জোর দেওয়া হয় আলোচনাকালে। সহযোগিতার ক্ষেত্রগুলি সম্পর্কে পর্যালোচনাএবং ২০১৭-২০ পর্যন্ত কৌশলগত অংশীদারিত্বের কর্মপরিকল্পনা রূপায়ণের বিষয়গুলি খতিয়েদেখতে ২০১৮-তে দু’দেশের বিদেশ মন্ত্রীর নেতৃত্বে গঠিত যৌথ কমিটির পরবর্তী বৈঠকআয়োজনের প্রস্তাবেও সম্মতিজ্ঞাপন করে ভারত ও ভিয়েতনাম। প্রতিরক্ষাও নিরাপত্তা সাইবারনিরাপত্তা ক্ষেত্রে ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যে স্বাক্ষরিত চুক্তিগুলির কার্যকররূপায়ণের ওপরও গুরুত্ব আরোপ করে দুটি দেশ। ভারতের জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদ সচিবালয়এবং ভিয়েতনামের সরকারি নিরাপত্তা মন্ত্রকের মধ্যে স্বাক্ষরিত সহযোগিতা চুক্তিটিকেদ্রুত বাস্তবায়িত করতেও সহমত প্রকাশ করে দু’পক্ষ। ভিয়েতনামেরসঙ্গে প্রতিরক্ষা সহযোগিতা ছাড়াও ঐ দেশের দক্ষতা বৃদ্ধিতে অংশীদারিত্বের আগ্রহপ্রকাশ করে ভারত। ভিয়েতনামের উপকূলরক্ষীবাহিনীর উচ্চগতির প্রহরা যান নির্মাণেরলক্ষ্যে ১০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের ঋণ সহায়তার বাস্তবায়নের বিষয়টি দ্রুততর করেতোলার ওপর জোর দেওয়া হয় দু’দেশের আলোচনা বৈঠকে। এছাড়াও, প্রতিরক্ষা সহযোগিতাকে আরওজোরদার করে তোলার সপক্ষে মত প্রকাশ করেন দু’দেশের নেতৃবৃন্দ। নৌ-ক্ষেত্রেবিশেষত, জলদস্যুতা রোধ, সমুদ্রপথের নিরাপত্তা, জাহাজ চলাচল সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়ইত্যাদি বিষয়ে সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করে তোলা যে একান্ত জরুরি সে বিষয়ে সহমতপ্রকাশ করে দুটি দেশই। ২০১৮-র জানুয়ারি মাসে নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত আসিয়ান-ভারতনৌ-সহযোগিতা সম্পর্কিত স্মারক শীর্ষ সম্মেলন আয়োজনের সূত্রে সামুদ্রিক বিষয়গুলিতেভারত-ভিয়েতনাম দ্বিপাক্ষিক পরামর্শ ও আলাপ-আলোচনা চালিয়ে যাওয়ার ওপর বিশেষ জোরদেওয়া হয়। আন্তঃসীমান্তসন্ত্রাস সহ যে কোন ধরনের সন্ত্রাসমূলক তৎপরতার কঠোর নিন্দা করে দুটি দেশই। বিশ্বশান্তি, নিরাপত্তা এবং স্থিতিশীলতার পক্ষে সন্ত্রাসের হুমকি যে ভয়ঙ্কর আকার গ্রহণকরতে পারে, সে সম্পর্কে ভারতের উদ্বেগে সায় জানায় ভিয়েতনামও। আন্তর্জাতিক সন্ত্রাস সম্পর্কে একটিসুসংবদ্ধ আলোচনা বৈঠক ও প্রস্তাব গ্রহণের প্রয়োজনীয়তার দিকেও দৃষ্টি আকর্ষণ করেভারত ও ভিয়েতনাম। গত দু’বছরে ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যে বাণিজ্যিক লেনদেনের মাত্রা যেভাবেবৃদ্ধি পেয়ে চলেছে, তাতে সন্তোষ প্রকাশ করেন ভিয়েতনামের প্রেসিডেন্ট এবং ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের মাত্রাকে আরও প্রসার ও বৈচিত্র্যমুখী করেতোলার উদ্দেশ্যে সম্ভাব্য সমস্তরকম প্রচেষ্টা চালিয়ে যাওয়ার অনুকূলে মত প্রকাশকরেন তাঁরা। আগামী ২০২০ সালের মধ্যে ১৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলারের বাণিজ্যলক্ষ্যমাত্রা পূরণে উদ্যোগী হওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট সকল পক্ষকেই তাঁরা পরামর্শ দেন।এ বছর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হ্যানয়ে বাণিজ্য সম্পর্কিত যৌথ সাব-কমিশনের পরবর্তী বৈঠকআয়োজনের প্রস্তাবে সায় দেন দুই নেতাই। হাইড্রোকার্বন,বিদ্যুৎ উৎপাদন, পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানি, শক্তিক্ষেত্র, পরিবেশ ও জ্বালানি সংরক্ষণ,পরিকাঠামো, বস্ত্রশিল্প, পাদুকা শিল্প, ওষুধ উৎপাদন, মেশিন টুল্‌স, কৃষি ও কৃষিজাতপণ্য, পর্যটন, রাসায়নিক, তথ্য, যোগাযোগ ও প্রযুক্তি এবং অন্যান্য পরিষেবাসম্পর্কিত শিল্পক্ষেত্রগুলিতে নতুন নতুন বাণিজ্য ও বিনিয়োগ সম্ভাবনার প্রসারে দু’দেশেরবাণিজ্য কর্তাদের উদ্যোগী হওয়ার আহ্বান জানান ভারত ও ভিয়েতনামের নেতৃদ্বয়। এছাড়াও,কৃষিপণ্যের উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি এবং কৃষিক্ষেত্রে বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির প্রয়োগকেআরও নিবিড়তর করে তোলার ওপরও জোর দেন তাঁরা। ‘মেক ইনইন্ডিয়া’ কর্মসূচির আওতায় ভারতে বিনিয়োগ-বান্ধব যে পরিবেশ ও পরিস্থিতির সৃষ্টিহয়েছে, তার সুযোগ গ্রহণ করার জন্য ভিয়েতনামের শিল্প সংস্থাগুলিকে আহ্বান জানানশ্রী নরেন্দ্র মোদী। অন্যদিকে, প্রেসিডেন্ট ওয়াং, ভিয়েতনামে বিনিয়োগের প্রসারে আমন্ত্রণজানান ভারতের শিল্পপতিদের। বাণিজ্যিক কাজকর্ম সহজতর করে তোলার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রীমোদীর কর্মপ্রচেষ্টার ভূয়সী প্রশংসাও করেন তিনি। ভিয়েতনামকেদীর্ঘদিন ধরে ভারত যেভাবে অনুদান ও ঋণ সহায়তার প্রসার ঘটিয়ে আসছে, সেজন্য এই দেশেরভূয়সী প্রশংসা করেন তিনি। ভিয়েতনামের ছাত্রছাত্রী, গবেষক এবং শিক্ষাক্ষেত্রেরপেশাদার কর্মী ও সরকারি আধিকারিকদের বৃত্তিদানের মাত্রা ভারত যেভাবে আরও উন্নীতকরেছে, তাতে ভারতের প্রতি ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করেন তিনি। বিশেষত, ভারতেরপ্রযুক্তিগত ও অর্থনৈতিক সহযোগিতা কর্মসূচি, মেকং-গঙ্গা সহযোগিতা কাঠামো এবংঅন্যান্য প্রকল্পগুলির মাধ্যমে যেভাবে এই সহযোগিতার প্রসার ঘটেছে, তার সপ্রশংসউল্লেখ করেন ভিয়েতনামের রাষ্ট্রনেতা। এ বছর আসিয়ান-ভারত স্মারক শীর্ষ সম্মেলনেবিভিন্ন দেশকে গ্রামীণ সংযোগ ও যোগাযোগ ব্যবস্থার প্রসারে সহযোগিতাবদ্ধ হওয়ার যেআহ্বান জানিয়েছেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী, তার বিশেষ প্রশংসাও করেন তিনি। তেল ও গ্যাসঅনুসন্ধান, তাপবিদ্যুৎ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদন এবং শক্তি ও পুনর্নবীকরণযোগ্য জ্বালানিক্ষেত্রে দু’দেশের সহযোগিতা যে উল্লেখযোগ্যভাবে প্রসার লাভ করেছে একথা স্বীকারকরেন দুই রাষ্ট্র নেতাই। ভিয়েতনামে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান প্রচেষ্টাকে আরও জোরদারকরে তুলতে ভারতের বাণিজ্য কর্তাদের উদ্দেশ্যে সাদর আহ্বান জানান প্রেসিডেন্ট ত্রাণদাই কোয়াং। তৃতীয় দেশগুলিতে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধান প্রকল্পের ক্ষেত্রে সহযোগিতাপ্রসারের জন্য স্বাক্ষরিত চুক্তিটি যথাযথভাবে অনুসরণ করার জন্য আহ্বান জানান দুইনেতাই। ভিয়েতনামে তেল ও গ্যাস অনুসন্ধানের ক্ষেত্রে যে সমস্ত সুযোগ-সুবিধার প্রসারঘটানো হয়েছে তা সদ্ব্যবহারের জন্য সংশ্লিষ্ট ভারতীয় শিল্পপতিদের কাছে আহ্বান জানানভিয়েতনামের রাষ্ট্রপ্রধান। ভারতে ভিয়েতনামের একটিসাংস্কৃতিক কেন্দ্র গড়ে তোলার যে প্রস্তাব করা হয়েছে ঐ দেশের পক্ষ থেকে, তাকেআন্তরিকভাবে স্বাগত জানায় ভারত। ভিয়েতনামে ইউনেস্কোবিশ্ব সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য কেন্দ্রটির সংরক্ষণ এবং সেটিকে নতুনভাবে গড়ে তোলার জন্য যেপ্রকল্পটি রয়েছে, তার সফল রূপায়ণ প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন দুই নেতাই।ভিয়েতনামেবিভিন্ন ঐতিহ্য ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের পুনরুদ্ধার ও সংস্করণ প্রচেষ্টায় ভারতেরআর্থিক সহযোগিতা প্রস্তাবকে স্বাগত জানায় ভিয়েতনাম। ঐ দেশেরফু তো, বিন ফুক এবংঅন্যান্য প্রদেশে ৫০০ জন ভিয়েতনাম নাগরিকের কাছেজয়পুর ফুট-এর মতো কৃত্রিম অঙ্গপৌঁছে দেওয়ার জন্য ভারত সরকার এবং ভগবান মহাবীর বিকলাঙ্গ সহায়তা সমিতি যেপুনর্বাসন কর্মসূচি রূপায়িত করছে, সেজন্য ভিয়েতনামের পক্ষ থেকে ভারতকে আন্তরিকধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা জানানো হয়। এশিয়ারআঞ্চলিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি সহ দ্বিপাক্ষিক এবং আন্তর্জাতিক বিষয়গুলিতে সহমতপ্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট ত্রাণ দাই কোয়াং। ২০১৫-১৮ – এই সময়কালে একটি সমন্বয় রক্ষাকারী দেশ হিসেবেভিয়েতনামের বিশেষ অবদানের কথাও স্বীকার করে নেওয়া হয় দ্বিপাক্ষিক আলোচনা বৈঠকে। আসিয়ান-ভারতকৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কের প্রসারে দিল্লি ঘোষণার মধ্যে যে প্রস্তাবগুলির কথাউল্লেখ রয়েছে, তার বাস্তবায়নে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের অনুকূলেও মত প্রকাশ করেদুটি দেশ। আঞ্চলিক তথাআন্তর্জাতিক মঞ্চগুলিতে ভারত ও ভিয়েতনামের মধ্যে সহযোগিতা ও সমন্বয়ের অবস্থানেরসপ্রশংস উল্লেখ করা হয় দ্বিপাক্ষিক এই আলোচনা বৈঠকে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তাপরিষদের অস্থায়ী সদস্য পদে দু’দেশের আবেদনকে পারস্পরিকভাবে সমর্থন জানানোর সিদ্ধান্তেরকথাও পুনরুচ্চারিত হয় এই বৈঠকে। অন্যদিকে, নিরাপত্তা পরিষদের সংস্কার ও পুনর্গঠনপ্রক্রিয়ায় ভারতের স্থায়ী সদস্য পদের আবেদনকে ভিয়েতনাম নিরন্তরভাবে সমর্থন জানিয়েযাবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়। ভারত-প্রশান্তমহাসাগরীয় অঞ্চল তথা বৃহত্তর বিশ্বে শান্তি, স্থিতিশীলতা ও উন্নয়নের স্বার্থে ভারতও ভিয়েতনাম পরস্পরের সঙ্কল্প ও উন্নয়ন সহযোগিতার অঙ্গীকারের বিষয়টি পুনর্ব্যক্তকরে। দক্ষিণ চিন সমুদ্রে নৌ চলাচলের স্বাধীনতা এবং আকাশপথে বিমান পরিবহণেরবিষয়গুলিও আলোচিত হয় এই বৈঠকে। নিরন্তরউন্নয়নের লক্ষ্যে আগামী ২০৩০ সাল পর্যন্ত এক সুসংবদ্ধ কর্মসূচি গ্রহণের বিষয়টিকেস্বাগত জানান দুই বিশ্ব নেতাই। এর লক্ষ্য পূরণে দুটি দেশই যে অঙ্গীকারবদ্ধ, সেকথাওবিশেষ জোরের সঙ্গে ঘোষণা করা হয়। তাঁর ভারতসফরকালে যেভাবে আন্তরিক অভ্যর্থনা এবং আতিথ্য তিনি লাভ করেছেন, সেজন্য রাষ্ট্রপতিকোবিন্দ এবং ভারতের মৈত্রী প্রিয় জনসাধারণকে ধন্যবাদ জানান প্রেসিডেন্ট ত্রাণ দাইকোয়াং। শ্রীলঙ্কা, ভারত এবং বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের কাছেএই দিনটির গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম । কলম্বোয় আন্তর্জাতিক ভেসক দিবস উৎসবে আমাকে প্রধান অতিথির সম্মান দেওয়ারজন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ মাননীয় প্রেসিডেন্ট মৈত্রীপালা সিরিসেনা, প্রধানমন্ত্রীরনিল বিক্রমসিংহে এবং শ্রীলঙ্কাবাসীর কাছে। পবিত্র এই উপলক্ষের দিনটিতে আমি এখানে বহনকরে নিয়ে এসেছি দিব্যজ্ঞানী সম্মকসম্বুদ্ধ’র দেশ থেকে ১২৫ কোটি জনগণের শুভেচ্ছাকে। মাননীয় বিশিষ্টজন এবং বন্ধুস্থানীয় ব্যক্তিরা, ভারতের বুদ্ধগয়া হ’ল সেই স্থান, যেখানে রাজপুত্র সিদ্ধার্থেরউত্তরণ ঘটেছিল বুদ্ধ রূপে। বৌদ্ধবাদের প্রেরণাতেই পূর্ত্য হয়ে উঠেছে আমাদের জাতীয়প্রতীকগুলি। বৌদ্ধধর্মের বৈশিষ্ট্যের প্রতিফলন ঘটেছে আমাদের সংস্কৃতি, দর্শন ওশাসন ব্যবস্থার গভীরে। বৌদ্ধধর্মের ঐশ্বরিক সৌরভ ভারত থেকে ছড়িয়ে পড়েছে বিশ্বেরসকল প্রান্তে। সম্রাট অশোকের সুযোগ্য সন্তান মহেন্দ্র ও সংঘমিত্রা ধর্মদূত হিসাবেপাড়ি দিয়েছিলেন ভারত থেকে শ্রীলঙ্কায় ধর্মের সর্বশ্রেষ্ঠ উপহারকে দান করার জন্য। বুদ্ধ স্বয়ং বলেছিলেন যে, ধর্মই হ’ল সর্বশ্রেষ্ঠ উপহার। শ্রীলঙ্কা আজ এইকারণে গর্ব অনুভব করতে পারে যে, বুদ্ধের শিক্ষা ও আদর্শের এক পীঠস্থান হয়ে উঠেছেএই দেশটি। বহু শতক পরে একইভাবে যাত্রা শুরু করেছিলেন অঙ্গারিকা ধর্মপালা। তবে,এবার তাঁদের যাত্রা ছিল শ্রীলঙ্কা থেকে ভারতের উদ্দেশ্যে । বুদ্ধের নিজেরদেশে বৌদ্ধধর্মের শক্তির পুনরুদ্ধারই ছিল তাঁদের মূল লক্ষ্য । অভিন্ন এবংঅবিকৃত বৌদ্ধ ঐতিহ্যের উদযাপনের মুহূর্তই হ’ল ভেসক দিবস। এই ঐতিহ্য শতাব্দীর পরশতাব্দী ধরে বহু প্রজন্মের মধ্য দিয়ে যোগসূত্র রচনা করেছে আমাদের সমাজ ব্যবস্থারমধ্যে। দুই ঘনিষ্ঠপ্রতিবেশী দেশ হিসাবে অনেকগুলি স্তর অতিক্রম করে এসেছে আমাদের এই পারস্পরিকসম্পর্ক। বৌদ্ধ ধর্মের মিলিতমূল্যবোধ এবং আমাদের দু’দেশের মিলিত ভবিষ্যতের অনন্ত সম্ভাবনাই শক্তি যুগিয়েছেআমাদের এই সম্পর্ককে। এই মৈত্রী সম্পর্ক হল এমনই একটি বিষয়, যা প্রোথিত রয়েছেদু’দেশের হৃদয়ের অন্তঃস্থলে, যা সম্পৃক্ত হয়ে রয়েছে দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থারমধ্যে। বৌদ্ধ ঐতিহ্যের এইদেশটির সঙ্গে আমাদের শ্রদ্ধা ও সম্পর্কের একটি প্রতীক হিসেবে এ বছর আগস্ট মাসেকলম্বো ও বারাণসীর মধ্যে চালু হতে চলেছে সরাসরি বিমান পরিবহণ। পরম শ্রদ্ধেয়বৌদ্ধগুরু, বিশিষ্টজন এবং বন্ধুগণ, শ্রীলঙ্কার সঙ্গেআমাদের সম্পর্ককে নিবিড় করে তোলার এক বিশেষ সুযোগ ও মুহূর্ত যে এখন উপস্থিত একথাআমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি। বিভিন্ন ক্ষেত্রে আমাদের সহযোগিতার সম্পর্ককে আরও এগিয়েনিয়ে যাওয়ার এ এক অনন্য সুযোগ। আমাদের মৈত্রী সম্পর্কের সাফল্যের একটি দিকচিহ্ন হলশ্রীলঙ্কার সফল অগ্রগতি। এই দেশের ভাই-বোনদের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধি নিশ্চিত করে তোলারকাজে সাহায্য করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের উন্নয়ন সহযোগিতাকে আরও নিবিড় করেতুলতে অর্থনৈতিক অগ্রগতির ইতিবাচক পরিবর্তনের লক্ষ্যে নিরন্তরভাবেই আমরা বিনিয়োগকরে যাব। আমাদের মূল শক্তি নিহিত রয়েছে পারস্পরিক জ্ঞান, দক্ষতা ও ক্ষমতা এবংসমৃদ্ধি বিনিময়ের মধ্যে। বাণিজ্য ও বিনিয়োগের ক্ষেত্রে আমরা ইতিমধ্যেই হয়ে উঠেছিপরস্পরের বিশেষ অংশীদার। আমরা বিশ্বাস করি যে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রযুক্তি এবংচিন্তাভাবনাকে যদি আমরা সীমান্ত অতিক্রম করে একে অপরের দেশে পৌঁছে দিতে পারি, তাতেলাভবান হব আমরা দুটি দেশই। ভারতের দ্রুত অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি প্রভূত কল্যাণসাধন করবেসমগ্র অঞ্চলেরই এবং বিশেষভাবে শ্রীলঙ্কার। পরিকাঠামো ও যোগাযোগ, পরিবহণ ও জ্বালানি– প্রতিটি ক্ষেত্রেই আমরা নিবিড় করে তুলব আমাদের সহযোগিতাকে। কৃষি, শিক্ষা,স্বাস্থ্য, পুনর্বাসন, পরিবহণ, বিদ্যুৎ, সংস্কৃতি, জল, আশ্রয়, ক্রীড়া এবংমানবসম্পদ সহ মানব প্রচেষ্টার প্রায় প্রতিটি ক্ষেত্রেই প্রসারিত আমাদের উন্নয়নসহযোগিতা । বর্তমানে, শ্রীলঙ্কারসঙ্গে ভারতের উন্নয়ন সহযোগিতার মাত্রা উন্নীত হয়েছে ২.৬ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে । আমাদের মূল লক্ষ্য হল এক শান্তিপূর্ণ,সমৃদ্ধ ও সুরক্ষিত ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করে তোলার কাজে শ্রীলঙ্কা ও তার জনসাধারণকেসর্বতোভাবে সাহায্য ও সমর্থন করে যাওয়া। কারণ, শ্রীলঙ্কার অধিবাসীদের আর্থ-সামাজিককল্যাণের সঙ্গে যুক্ত রয়েছে ১২৫ কোটি ভারতবাসীর কল্যাণ। ভারত মহাসাগর অঞ্চলে স্থলও জলসীমা সর্বত্রই আমাদের দু’দেশের সমাজ ব্যবস্থার নিরাপত্তা একে অপরের ওপরনির্ভরশীল এবং তাকে কোনভাবেই বিচ্ছিন্ন করা যায় না। বহু শতক পূর্বের ভগবান বুদ্ধের বাণী আজওসমান প্রাসঙ্গিক। যে পথের সন্ধান দিয়ে গেছেন ভগবান বুদ্ধ, তার প্রাসঙ্গিকতা রয়েছেআমাদের সকলেরই জীবনে। তার সার্বজনীনতা ও সজীবতা সত্যিই বিস্ময়কর। বিভিন্ন জাতিকেযুক্ত করেছে ভগবান বুদ্ধের বাণীর এই প্রাসঙ্গিকতা। ভগবান বুদ্ধের দেশ থেকে বৌদ্ধচর্চার যে প্রসার ঘটেছে বিশ্বের সর্বত্র, তার জন্য গর্বিত দক্ষিণ, মধ্য,দক্ষিণ-পূর্ব এবং পূর্ব এশিয়ার সবক’টি জাতিই। ভেসক দিবস উদযাপনের বিষয় হিসেবে যাআজ সর্বজন স্বীকৃত সেই সামাজিক ন্যায় ও নিরন্তর বিশ্ব শান্তির মধ্যে প্রতিফলিত হয়ভগবান বুদ্ধেরই শিক্ষাদর্শ। বিশ্বব্যাপী হিংসা যেভাবে ছড়িয়ে পড়েছে একমাত্র বুদ্ধেরশান্তির বাণীই তার যোগ্য প্রত্যুত্তর হয়ে উঠতে পারে বলে আমি বিশ্বাস করি। নিষ্ক্রিয়শান্তির কোন বাণী নয়, বরং সক্রিয় শান্তি প্রচেষ্টার মাধ্যমেই গড়ে উঠতে পারেআলোচনা, সম্প্রীতি ও ন্যায়ের পরিবেশ। ভগবান বুদ্ধের ভাষায় যা করুণা (সহমর্মিতা) ওপ্রজ্ঞা (বিশেষ জ্ঞান)। ভগবান বুদ্ধ বলেছেন, “শান্তির থেকে বড় আশীর্বাদ আর কিছুহতে পারে না।” আপনাদের সঙ্গে এখানেউপস্থিত থাকার সুযোগদানের জন্য আমি আরও একবার ধন্যবাদ জানাই আপনাদের। আজ বিকেলে কাণ্ডিতেশ্রী দালাদা মালিগাওয়া মন্দিরে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য আমি সাগ্রহে অপেক্ষা করছি । প্রতিরক্ষা মন্ত্রকের স্থায়ী সচিব ব্রিগেডিয়ার জেনারেল সান উইন মায়ানমারে নিযুক্ত ভারতীয় রাষ্ট্রদূত বিক্রম মিসরি সাধারণতন্ত্রী ভারত সরকার এবং প্রজাতন্ত্রী মায়ানমার সরকারের মধ্যে ২০১৭-২০২০ সময়কালের জন্য সাংস্কৃতিক সফর বিনিময় কর্মসূচি সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় বিষয়সমূহ মন্ত্রকের স্থায়ী সচিব ইউ তুন ওন ভারতীয় নৌ-বাহিনী এবং মায়ানমার নৌ-বাহিনীর মধ্যে হোয়াইট শিপিং সম্পর্কিত তথ্য বিনিময়ের ওপর সমঝোতাপত্র (মায়ানমার নৌ-বাহিনীর) প্রধান রিয়ার অ্যাডমিরাল মো আং সাধারণতন্ত্রী ভারত সরকার এবং প্রজাতন্ত্রী মায়ানমার সরকারের মধ্যে উপকূলবর্তী এলাকায় নজরদারি ব্যবস্থা সম্পর্কিত কারিগরি সহযোগিতা চুক্তি ভারত সাধারণতন্ত্রের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রকের সেন্ট্রাল ড্রাগ্‌স স্ট্যান্ডার্ড কন্ট্রোল অর্গানাইজেশন (সিডিএসসিও) এবং মায়ানমারের স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া মন্ত্রকের খাদ্য ও ওষুধ (এফডিএ) দপ্তরের মধ্যে চিকিৎসার সাজসরঞ্জাম ও উৎপাদন সম্পর্কিত সমঝোতাপত্র মায়ানমার সরকারের স্বাস্থ্য ও ক্রীড়া মন্ত্রকের মহানির্দেশক ডঃ থান টুট ভারত সাধারণতন্ত্রের স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ মন্ত্রক এবং মায়ানমার প্রজাতন্ত্রেরস্বাস্থ্য ও ক্রীড়া মন্ত্রকের মধ্যে স্বাস্থ্য ও চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত সমঝোতাপত্র এমআইআইটি স্থাপনের লক্ষ্যে মউ-এর প্রসার সম্পর্কিত চুক্তি উচ্চতর শিক্ষা দপ্তরের মহানির্দেশক ডঃ থিন উইন তথ্যপ্রযুক্তির ক্ষেত্রে দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে ভারত-মায়ানমার কেন্দ্র স্থাপনের জন্য মউ-এর প্রসার সম্পর্কিত চুক্তি গবেষণা ও উদ্ভাবন দপ্তরের মহানির্দেশক ইউ উইন খেং মো ভারতের নির্বাচন কমিশন এবং মায়ানমারের দ্য ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশনের মধ্যে নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কিত সহযোগিতার লক্ষ্যে সমঝোতাপত্র মায়ানমারের ইউনিয়ন ইলেকশন কমিশনের সচিব ইউ তিন তুন মায়ানমার প্রেস কাউন্সিল এবং ভারতীয় প্রেস কাউন্সিলের মধ্যে সহযোগিতা প্রসার সম্পর্কিত সমঝোতাপত্র ভাইস চেয়ারম্যান (১) ইউ আং লা তুন তাঁদের ছাত্রছাত্রীদের ডিগ্রি প্রদানে সক্ষম হবে| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লীর বিজ্ঞান ভবনে ভারতে নির্মাণ প্রযুক্তি সংক্রান্ত এক অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। প্রতিটি পরিবারের নিজস্ব বাড়ির স্বপ্ন পূরণের লক্ষ্যে কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিশ্রুতির ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই স্বপ্ন বাস্তবায়িত হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারতে দ্রুত নগরোন্নয়নের প্রেক্ষিতে আবাসন-নির্মাণ প্রযুক্তি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলির সমাধান জরুরি হয়ে উঠেছে। এ ধরনের চ্যালেঞ্জগুলির সমাধানে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, হৃদয় ও অম্রুতের মতো একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করা হয়েছে, যার লক্ষ্য আবাসন ক্ষেত্রে আমূল পরিবর্তন নিয়ে আসা। তিনি আরও বলেন, ভিন্ন ভিন্ন ভৌগলিক পরিস্হিতি অনুযায়ী উপযুক্ত প্রযুক্তি গ্রহণ করাও বড়ো চ্যালেঞ্জ। শ্রী মোদী জানান, সুলভ আবাসন, রিয়েল এস্টেট ক্ষেত্র, দক্ষতা উন্নয়ন ও আবাসন প্রযুক্তি ক্ষেত্রের ওপর যথাযথ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ২০২২ নাগাদ প্রত্যেক ভারতীয়ের নিজস্ব বাড়ি থাকবে, তাঁর এই স্বপ্নের কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী জানান, বর্তমান সরকারের মেয়াদকালে ইতিমধ্যেই ১ কোটি ৩০ লক্ষ বাড়ি নির্মিত হয়েছে। দক্ষতা বাড়াতে এবং গরিব মানুষের সহায়তায় প্রত্যেককে তিনি একজোট হয়ে কাজ করার আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আবাসন প্রযুক্তি সংক্রান্ত চ্যালেঞ্জগুলির প্রেক্ষিতে ভারতের নির্মাণ শিল্প সংক্রান্ত বাস্তুতন্ত্রকে আন্তর্জাতিক মানের হয়ে উঠতে সাহায্য করবে। শ্রী মোদী ২০১৯-এর এপ্রিল থেকে ২০২০-র মার্চ পর্যন্ত সময়কে নির্মাণ প্রযুক্তি বর্ষ হিসেবে উদযাপন করার কথাও ঘোষনা করেন। স্ক্র্যামজেট রকেট ইঞ্জিনের সফল পরীক্ষার জন্য ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা সংস্থার (ইসরো) বিজ্ঞানীদের অভিনন্দিত করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ইসরোকে অভিনন্দন। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু, প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু’র প্রথম ভারত সফরউপলক্ষে তাঁকে স্বাগত জানাতে পেরে আমি বিশেষভাবে আনন্দিত। (হে সুহৃদ, আপনাকে ভারতে স্বাগত!) প্রধানমন্ত্রী, আপনার এই সফর ভারত-ইজরায়েল মৈত্রীসম্পর্কের যাত্রাপথে এক বহু প্রতীক্ষিত মুহূর্ত। ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্কের ২৫তম বর্ষেরএকটি স্মারক হিসাবে আপনার এই সফর সূচি যথার্থ বলেই আমরা মনে করি। ২০১৮’তে আমাদের প্রথম সম্মানিত অতিথি হিসাবে আপনার এইসফর আমাদের নতুন বছরের বর্ষপঞ্জিতে এক উপলক্ষ বিশেষ। এটি আয়োজিত হয়েছে এমন একশুভক্ষণে, যখন সকল ভারতবাসী বসন্তের আগমন, পুনরুজ্জীবন, আশা এবং ফসল তোলার উৎসবকেআনন্দের সঙ্গে বরণ করে নিয়েছে। লোহরি, বিহু, মকর সংক্রান্তি এবং পোঙ্গল উদযাপনভারতের ঐক্য ও বৈচিত্র্যের এক উজ্জ্বল বহিঃপ্রকাশ। প্রধানমন্ত্রী, কাঙ্খিত ফললাভের জন্য আমি যে খুবই অধৈর্য্য, এই দুর্নাম বোধ হয় আমার রয়েছে। আমি যদি খোলাখুলিভাবেই একটি গোপন কথা আজ আপনার সামনেপ্রকাশ করি, তা হলে আমি জানি, আপনিও তাতে সায় দেবেন। গত বছর তেল আভিভে আমলাতান্ত্রিক দীর্ঘ সূত্রিতা কমিয়েআনার ইচ্ছা আপনি প্রকাশ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্র্‌ আমি আপনাকে একথা জানাতে পেরে খুবইআনন্দিত, যে ঠিক ঐ কাজটি আমরা ভারতে করতে চলেছি। পূর্বে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলিরবাস্তবায়নের জন্য আমরা দু’জনেই যে অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছি – একথাও আমরা ব্যক্তকরেছি পরস্পরের কাছে। বাস্তবের জমিতে এর সুফলও আমরা লক্ষ্য করেছি। আজ আমাদেরআলোচনা ও মতবিনিময়ের উল্লেখযোগ্য দিকটি হ’ল, আমাদের যৌথ কর্মপ্রচেষ্টায় আরও গতিসঞ্চার এবং অংশীদারিত্বের সম্পর্কের উন্নয়ন প্রচেষ্টা। তিনটি ভিন্ন ভিন্ন উপায়ে এই পথ অনুসরণের সিদ্ধান্তনিয়েছি আমরা : প্রথমত, আমাদের দু’দেশের জনসাধরণের জীবনকে স্পর্শ করেযায়, এ ধরণের ক্ষেত্রগুলিতে আমাদের সহযোগিতার স্তম্ভগুলিকে আরও শক্তিশালী করেতুলব। এই ক্ষেত্রগুলি হ’ল – কৃষি, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি এবং নিরাপত্তা। যে চুক্তি বিনিময় পর্ব কিছুক্ষণ আগেই সম্পন্নহয়েছে, তার মধ্যেই আমাদের এই প্রচেষ্টার প্রতিফলন দেখতে পাওয়া যাবে। বিভিন্নক্ষেত্রে বহুধা প্রসারিত কর্মপ্রচেষ্টা গড়ে তুলতে আমরা যে বিশেষভাবে আগ্রহী তারপরিচয় পাওয়া যাবে এর অনেকগুলি ক্ষেত্রেই। আমাদের এই ভৌগোলিক অবস্থানের মধ্যে সাধারণ মানুষ এবংতাঁদের চিন্তাভাবনা বিনিময়ের লক্ষ্যেও আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। এজন্য প্রয়োজন নীতিগতসুযোগ-সুবিধা, পরিকাঠামো, যোগাযোগ ব্যবস্থা এবং সরকারি সাহায্য ও সমর্থনের বাইরেওঅন্যান্য ক্ষেত্রগুলিকে উৎসাহদান। বিজ্ঞান শিক্ষার সঙ্গে যুক্ত ১০০ জনেরও বেশিতরুণ-তরুণীদের দ্বিপাক্ষিক বিনিময় সফর শুরু করারও আমরা সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছি। এক বলিষ্ঠ অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার লক্ষ্যে দ্বিপাক্ষিকবাণিজ্য ও বিনিয়োগের প্রসার একটি অবশ্য পালনীয় শর্ত। এই লক্ষ্যে আরও বেশি করে কাজকরে যেতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু এবং আমি সহমত প্রকাশ করেছি। গত বছর তেল আভিভবৈঠকের পর দ্বিপাক্ষিক মঞ্চের আওতায় দু’দেশের সিইও-দের সঙ্গে আমরা দ্বিতীয়বার এবিষয়ে কথা বলব। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু’র সঙ্গে যে এক বিরাটপ্রতিনিধিদল এদেশে এসেছেন আমি তাঁদেরও স্বাগত জানাই। ইতিহাস তথা বীর সেনানীদের কথা কখনই বিস্মৃত হয়নি আমাদেরএই দুটি দেশ। এই ক্ষেত্রটিতে প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুর এই বিশেষ মানসিকতা ওদৃষ্টিভঙ্গীর আমি বিশেষ অনুরাগী। ইজরায়েলের সঙ্গে আমাদের বর্তমান অংশীদারিত্বের ভবিষ্যতেরদিকে দৃষ্টিপাত করলে আশা ও আশাবাদ আমাকে উদ্বেলিত করে। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুরমধ্যে আমি খুঁজে পেয়েছি এমনই এক ব্যক্তিত্বকে, যিনি ভারত-ইজরায়েল সম্পর্কেক্রমান্বয়ে নতুন নতুন মাত্রা এনে দিতে আমার মতোই অঙ্গীকারবদ্ধ। পরিশেষে, প্রধানমন্ত্রী, একদিন পরই আমার নিজের রাজ্যগুজরাটে আবার আপনার সঙ্গে মিলিত হওয়ার সুযোগ পাব – একথা চিন্তা করে আমি বিশেষভাবেআনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহু, শ্রীমতী নেতানিয়াহু এবং আগতপ্রতিনিধিদলের ভারতে অবস্থানকাল স্মরণীয় হয়ে থাকুক – এই প্রার্থনা জানাই। শুক্রবারসন্ধ্যায় বারাণসীর ঐতিহাসিক তুলসী মানস মন্দির পরিদর্শন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে ‘রামায়ণ’ শীর্ষকএকটি ডাকটিকিটও আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশকরেন তিনি। ইতিহাসসংরক্ষণের তা হল এক চমৎকার উপায় ও পদ্ধতি। ভগবান শ্রীরামচন্দ্রের জীবন ও আদর্শকিভাবে আজও ব্যক্তি মানুষকে অনুপ্রাণিত করে, অনুষ্ঠানে প্রদত্ত এক ভাষণে সে কথারওউল্লেখ করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী কুমারী জয়ললিতার সঙ্গে ঐ রাজ্যের বিভিন্ন অংশের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা বলেন। এক ট্যুইটার বার্তায় তিনি বলেন, “জয়ললিতাজীর সঙ্গে তামিলনাডুর বিভিন্ন অঞ্চলের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে কথা হয়েছে। দরিদ্র সাধারণমানুষের কাছে উন্নতমানের চিকিৎসার সুযোগ সুলভে পৌঁছে দেওয়ার ওপর বিশেষ জোর দেনতিনি। এই প্রসঙ্গে বিভিন্ন ধরনের ওষুধ এবং স্টেন্টের দাম কমানোর লক্ষ্যে কেন্দ্রীয়সরকার যে সমস্ত পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে তারও উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রীমোদী বলেন যে দরিদ্র এবং মধ্যবিত্ত মানুষের কাছে সুলভ স্বাস্থ্য পরিচর্যার সুযোগপৌঁছে দিতে তিনি বদ্ধপরিকর। প্রতিরোধমূলক স্বাস্থ্য ও চিকিৎসার ওপর বিশেষ গুরুত্বআরোপ করে তিনি বলেন যে এক সুস্থ ভারত গড়ে তোলার লক্ষ্যেই সূচনা হয়েছে স্বচ্ছ ভারতঅভিযানের। প্রধানমন্ত্রী শুক্রবার নিউইয়র্কে দেখা করলেন ভূটানের প্রধানমন্ত্রী মিঃ শেরিং টোব্যাগের সঙ্গে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে ভারতের স্থায়ী সদস্যপদের বিষয়টিতে ভুটানের সমর্থনের কথা পুনরায় ব্যক্ত করেন মিঃ টোব্যাগে। শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট মিঃ এম. সিরিসেনার সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। শ্রীলঙ্কার বিভিন্ন প্রকল্পে ভারতের বিনিয়োগের প্রসঙ্গও দুই নেতার সাক্ষাৎকারকালে উঠে আসে। সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী মিঃ স্টিফেন লফ ভেন-এর সঙ্গেও সাক্ষাৎকার ঘটে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর। ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সাম্প্রতিক সুইডেন সফর যে যথেষ্ট তাৎপর্যময় ও ফলপ্রসূ হয়েছে, সেকথা জানান সুইডেনের প্রধানমন্ত্রী। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ সহ বিভিন্ন উদ্যোগ ও কর্মসূচিতে অংশগ্রহণের জন্য সুইডেন’কে আমন্ত্রণ জানান ভারতের প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী দেখা করেন সাইপ্রাসের প্রেসিডেন্ট মিঃ নিকোস আনাসটাসিয়ার্ডস-এর সঙ্গেও। সাইপ্রাসের সঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্কের কথা উল্লেখ করে শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, দুটি দেশ ভৌগোলিক দিক থেকে পরস্পরের থেকে অনেক দূরে অবস্থিত হলেও আবেগ ও মানসিকতার দিক থেকে খুবই কাছাকাছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে বুধবার কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাভুটানে নির্মিয়মান ১০২০ মেগাওয়াট ক্ষমতা সম্পন্ন ‘পুনাসিয়াংছু -II জলবিদ্যুৎ প্রকল্প ’ (এইচ ই পি )-এর জন্য ৭২৯০ .৬২কোটি টাকার ‘পুনর্বিবেচিত ব্যয়বরাদ্দ ’ (আর সি ই )-এ অনুমোদন দিয়েছে। এই পর্যায়ে প্রকল্পটিরজন্য মোট ব্যয় বরাদ্দ বৃদ্ধির পরিমান ৩৫১২ .৮২ কোটি টাকা। ২৫ ডিসেম্বর নয়াদিল্লি মেট্রোর নতুন ম্যাজেন্টা লাইনের একটি অংশের উদ্বোধনকরবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই অংশটি নয়ডার বোটানিক্যাল গার্ডেনঅঞ্চলটিকে যুক্ত করেছে দিল্লির কালকাজি মন্দিরের সঙ্গে। এর ফলে, নয়ডা ও দক্ষিণদিল্লির মধ্যে যাতায়াতের সময়ে অনেকটাই সাশ্রয় হবে। উদ্বোধন উপলক্ষে নয়ডায় একজনসমাবেশেও ভাষণ দেবেন প্রধানমন্ত্রী। দেশের নাগরিক পরিবহণ ব্যবস্থার আধুনিকীকরণে কেন্দ্রীয় সরকারের বিশেষ কর্মপ্রচেষ্টারএকটি অঙ্গ হ’ল মেট্রোর এই সংযোগ প্রকল্পটি। দেশের শহরাঞ্চলগুলিতে দ্রুত গণপরিবহণব্যবস্থাকে যে ক্রমশ প্রযুক্তি-কেন্দ্রিক এবং পরিবেশ-বান্ধব করে তোলা হচ্ছে – এইঘটনা তারই প্রমাণ। দুটি অনুষ্ঠানেই জনসমাবেশে ভাষণ দেওয়ার আগে উদ্বোধন করা নতুনলাইনটি ধরে মেট্রো সফর করেছেন তিনি। জাতীয় রাজধানী অঞ্চলে বিভিন্ন অনুষ্ঠানে যোগ দিতে যাওয়ার সময়ে মেট্রো’তেপ্রায়ই সফর করেছেন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, দেশের গণপরিবহণ ব্যবস্থাকে দ্রুত ও আধুনিক করে তুলতে গতসাড়ে তিন বছরে প্রায় ১৬৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের ৯টি মেট্রো প্রকল্পের সূচনা করেছেকেন্দ্রীয় সরকার। অন্যদিকে, মোট ১৪০ কিলোমিটার বিস্তৃতির আরও ৫টি নতুন মেট্রো রেলপ্রকল্পের অনুমোদনের কাজও সম্পূর্ণ হয়েছে। বারাণসীতে আগামীকাল পঞ্চদশ প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলন শুরু হচ্ছে। সম্মেলনের উদ্বোধন করবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। বারাণসীতে এই প্রথম তিন দিনের প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলন বারাণসীতে হচ্ছে। পরদিন, অর্থাৎ ২৫ জানুয়ারি তাঁরা দিল্লি যাবেন এবং ২৬ জানুয়ারি তাঁরা সেখানে প্রজাতন্ত্র দিবসের অনুষ্ঠান প্রত্যক্ষ করবেন। প্রসঙ্গত, মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী শ্রী প্রবীন্দ জগন্নাথ এই সম্মেলনের প্রধান অতিথি হিসাবে উপস্থিত থাকবেন। এই সম্মেলনে বিভিন্ন অনুষ্ঠানগুলির মধ্যে রয়েছে – ক) ২১ জানুয়ারি, ২০১৯ – যুবপ্রবাসী ভারতীয় দিবস উদযাপন। নতুন ভারত গঠনে প্রবাসী যুবক-যুবতীদের সুযোগ করে দেওয়ার প্রচেষ্টা চালানো হবে এই মঞ্চে। খ) ২২ জানুয়ারি, ২০১৯ – মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী শ্রী প্রবীন্দ জগন্নাথের উপস্থিতিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী প্রবাসী ভারতীয় দিবস সম্মেলনের শুভ সূচনা করবেন। এই সম্মেলনে নির্বাচিত প্রবাসী ভারতীয়দের ভারতে এবং প্রবাসে গুরুত্বপূর্ণ অবদানের জন্য প্রবাসী ভারতীয় সম্মান প্রদান করা হয়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার (২৪ অক্টোবর) নতুন দিল্লীতে ‘ম্যায় নেহি হম’ পোর্টাল এবং একটি অ্যাপের সূচনা করেন। ‘সেল্ফফর সোসাইটি’ তথা সমাজের জন্য আমি’র ভাবনাভিত্তিক ‘ম্যায় নেহি হম’পোর্টালটি তথ্যপ্রযুক্তি পেশাদার এবং সংগঠনগুলিকে সামাজিক সমস্যা ও সমাজ সেবার স্বার্থে নিজেদের প্রয়াসগুলিকে এক মঞ্চে নিয়ে আসতে সাহায্য করবে। আশা করা হচ্ছে, এই ধরনের কাজকর্ম সম্পাদনের মধ্যে দিয়ে সমাজের দুর্বলতর শ্রেণীর মানুষের সেবার লক্ষ্যে প্রযুক্তিগত সুযোগ-সুবিধাগুলিকে কাজে লাগিয়ে আরও সহযোগিতা গড়ে তুলতে পোর্টালটি সাহায্য করবে। সামাজিক কল্যাণের স্বার্থে কাজ করতে উৎসাহী মানুষের অংশগ্রহণ বাড়িয়ে তুলতেও পোর্টালটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে বলে মনে করা হচ্ছে। এই উপলক্ষে, তথ্যপ্রযুক্তি ও বৈদ্যুতিন উপকরণ নির্মাণের সঙ্গে যুক্ত পেশাদার, শিল্পপতি এবং প্রযুক্তিবিদদের সঙ্গে মতবিনিময়ের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানুষ যে অন্যের জন্য কাজ করতে, সমাজের সেবা করতে এবং ইতিবাচক পরিবর্তন নিয়ে আসতে চায়, সে ব্যাপারে তাঁর পূর্ণ আস্হা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মত বিনিময়কারিদের মধ্যে ভারতের অগ্রণী তথ্যপ্রযুক্তি সংস্হার তরুন পেশাদাররা ছাড়াও শ্রী আনন্দ মহিন্দ্রা, শ্রীমতি সুধা মূর্তি প্রমুখ ছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তিনি লক্ষ্য করেছেন ভারতের যুব সম্প্রদায় প্রযুক্তির ক্ষমতাকে অত্যন্ত কার্যকর উপায়ে সদ্ব্যবহার করছেন। এরা কেবল নিজেদের স্বার্থেই প্রযুক্তিকে ব্যবহার করছেন না, বরং অন্যদের স্বার্থেও তা কাজে লাগাচ্ছেন। তিনি এ ধরনের প্রচেষ্টাকে অসাধারণ দৃষ্টান্ত হিসেবে বর্ণনা করেন। সামাজিক ক্ষেত্রে একাধিক স্টার্ট-আপ রয়েছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী তরুণ সামাজিক শিল্পোদ্যোগীদের সাফল্য কামনা করেন। একাধিক প্রশ্নের জবাবে প্রধানমন্ত্রী বলেন, নিজেদের নির্ধারিত কাজকর্ম সম্পাদনের বাইরে বেরিয়ে এসে অভিনব কিছু করা এখন অত্যন্ত জরুরি হয়ে উঠেছে। এখনও অনেক কিছু জানার ও আবিষ্কারের বাকি রয়েছে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, অনেক সময় যখন ‘সরকার’ কিছুই করতে পারেনা, তখন তাকে ‘সংস্কারের’ মাধ্যমে তা করে দেখাতে হয়। পরিস্কার-পরিচ্ছন্নতাকে জীবনযাপনের অঙ্গ করে তোলার জন্যও তিনি আহ্বান জানান। আমাদের জল সংরক্ষণের পাশাপাশি জলের পুনর্ব্যবহারেরও প্রয়োজন। কঠোর পরিশ্রমী কৃষকদের আমি ‘বিন্দু বিন্দু জলসেচ’ পদ্ধতি গ্রহনের আবেদন জানাচ্ছি। শ্রী মোদী বলেন, স্বেচ্ছা-প্রয়াসের মাধ্যমে কৃষি ক্ষেত্রের উন্নতিতে অনেক কিছু করা যেতে পারে। এ ধরনের উদ্যোগে যুব সম্প্রদায়কে এগিয়ে আসতে এবং কৃষক সমাজের কল্যাণে কাজ করতে হবে। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বহু সংখ্যক মানুষ কর প্রদান করছেন, কারন তাদের মনে বিশ্বাস রয়েছে যে করের টাকা যথাথয ব্যবহার হচ্ছে এবং মানুষের কল্যাণে কাজে লাগানো হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের যুব সম্প্রদায়ের মেধাকে কাজে লাগিয়ে ভারত স্টার্ট-আপ ক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করছে। গ্রামীণ ডিজিটাল শিল্পোদ্যোগী গড়ে তোলার কাজে যুক্ত একটি দলের প্রশ্নের জবাবে শ্রী মোদী বলেন, এমন এক ভারতবর্ষ গড়ে তোলা প্রয়োজেন যেখানে সকলের সমান সুযোগ-সুবিধা থাকবে। তিনি বলেন, সামাজিক কাজ করা প্রত্যেকের কাছেই একটি গর্বের বিষয়। শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির সদস্যদের মতোআমিও বিশেষভাবে চিন্তিত। “সত্যবামাস্যাট” উপগ্রহ তৈরির কাজেযুক্ত ছাত্রদের একটি দল আজ নয়াদিল্লিতে দেখা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্রমোদীর সঙ্গে। সত্যবামা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ডঃ বি শীলা রানীও উপস্থিত ছিলেনতাঁদের সঙ্গে। গ্রিনহাউস গ্যাস সম্পর্কিত তথ্যসংগ্রহের উদ্দেশ্যে এই উপগ্রহ নির্মাণের কাজে যুক্ত ছাত্রদের প্রচেষ্টা ওঅধ্যবসায়ের ভুয়সী প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। মাননীয় ড আঙ্গ সান সু কি-কে ভারতে তাঁর প্রথম রাষ্ট্রীয়সফরে স্বাগত জানাতে পেরে আমি প্রকৃত অর্থেই আনন্দবোধ করছি। আপনার স্বচ্ছ দৃষ্টিভঙ্গী, বিচক্ষণ নেতৃত্ব, সংগ্রামীজীবন এবং পরবর্তীকালে তারই সূত্র ধরে মায়ানমারে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় সাফল্য সারাপৃথিবীর মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। ভারতে আপনাকে স্বাগত জানানো নিঃসন্দেহে একসম্মানের বিষয়। কয়েকদিন আগে গোয়ায় বিমস্টেক এবং ব্রিক্‌স-বিমস্টেক শীর্ষ সম্মেলনেঅংশগ্রহণের জন্যও আমরা কৃতজ্ঞ আপনার কাছে । আমাদেরদুটি দেশের অংশীদারিত্বের সম্পর্কের সবকটি বিষয় নিয়েই কিছুক্ষণ আগে বিস্তারিতভাবেএক সফল আলোচনা বৈঠক শেষ করলাম আমি এবং স্টেট কাউন্সেলর। আজ আমাদের মধ্যে আলোচনায় ঐ দেশেরশস্য বীজের গুণগত মান বৃদ্ধির প্রচেষ্টায় মায়ানমারের ইয়েজিনে বিভিন্ন ধরণের শস্যবীজের উৎপাদন কেন্দ্র গড়ে তুলবে ভারত। মণিপুরের মোরে থেকে মায়ানমারের তামু পর্যন্তবিদ্যুৎ-এর যোগান ব্যবস্থাকে উন্নত করে তোলারও প্রস্তাব দিয়েছি আমরা। নিকটও প্রতিবেশী বন্ধুরাষ্ট্র হিসেবে ভারত ও মায়ানমারের নিরাপত্তার স্বার্থ পরস্পরসম্পৃক্ত। বুদ্ধগয়ায় দুটি প্রাচীন মন্দির এবং রাজা মিন্ডন ওরাজা বেগিয়াডীর লিপি উদ্ধারের কাজ অচিরেই শুরু করে দেবে ভারতের পুরাতত্ত্ব বিভাগ। লোক কল্যাণ মার্গে আগামীকাল দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ১৫০ জন আখ চাষীদের সঙ্গে এক আলাপচারিতায় মিলিত হবেন প্রধানমন্ত্রী। উত্তর প্রদেশ, উত্তরাখন্ড, পাঞ্জাব, মহারাষ্ট্র ও কর্ণাটকের আখ চাষীরা সমবেত হবেন সেখানে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ নতুন দিল্লিতে ইসকন – এর গ্লোরি অফ ইন্ডিয়া কালচার সেন্টারে গীতা আরাধনা মহোৎসবে যোগদান করেন। শ্রী মোদী ইসকন ভক্তদের নির্মিত বিশালাকৃতি একটি ভগবত গীতার আবরণ উন্মোচন করেন। ৮০০ কিলোগ্রাম ওজনের এই গীতার পরিমাপ ২.৮ মিটার। এই উপলক্ষে এক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই মহান গীতার আবরণ উন্মোচন করা প্রকৃতই সৌভাগ্যের বিষয়। তিনি বলেন, এই অনন্য পুস্তক বিশ্বের কাছে ভারতের জ্ঞানের প্রতীক। এ প্রসঙ্গে তিনি জানান, এই বইয়ের একটি কপি প্রাক্তন মার্কিন রাষ্ট্রপতি মিঃ বারাক ওবামা-কে তিনি উপহার দিয়েছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বিশ্ব জুড়ে এই মহাকাব্য প্রচারের জন্য শ্রীল ভক্তিবেদান্ত প্রভুপাদজীর ভূমিকার প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের জীবনে সঙ্কটের সময়ে ভগবত গীতা পথপ্রদর্শকের কাজ করে। এই প্রসঙ্গে গীতার একটি বাণীর কথাও তিনি উল্লেখ করেন, যেখানে বলা আছে – ‘যখন আমরা মানবতার শত্রুর বিরুদ্ধে লড়াই করি, তখন পুণ্যশক্তি আমাদের সঙ্গে থাকে’। তিনি বলেন, গীতা জনগণ ও জাতির জন্য কাজ করতে উদ্বুদ্ধ করে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, মানবতার নানা সমস্যার সমাধান ভারতীয় মূল্যবোধ এবং সংস্কৃতির থেকে পাওয়া যায়। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী গুজরাটের অঞ্জারে মুন্দ্রা এনএনজি (রান্নার গ্যাস) টার্মিনাল, আঞ্জার-মুন্দ্রা পাইপ লাইন প্রকল্প এবং পালানপুর-পালি-বাড়মের পাইপলাইন প্রকল্পের উদ্বোধন করেছেন। এই উপলক্ষে, প্রধানমন্ত্রী বলেন, কচ্ছ-এ তিনি যে ভালোবাসা পেয়েছেন, তা অতুলনীয়। কচ্ছ অঞ্চলে বিগত দু-দশকে যে উন্নয়নমূলক কাজকর্ম হয়েছে, তিনি তার প্রশংসা করেন। শ্রী মোদী বলেন, গুজরাটে যখন প্রথম টার্মিনাল গড়ে উঠেছিল, রাজ্যের মানুষ বিস্মিত হয়েছিলেন। এখন এই রাজ্যে রান্নার গ্যাসের চতুর্থ টার্মিনালটি গড়ে উঠতে চলেছে। গুজরাট ভারতের এলএনজি হার হয়ে উঠছে মন্তব্য করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই উদ্যোগ প্রত্যেক গুজরাটবাসীকে গর্বিত করবে। যে কোনও দেশের সার্বিক উন্নয়নের জন্য এক শক্তিশালী বিদ্যুৎ ক্ষেত্রের প্রয়োজনীয়তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমরা যদি গরিব মানুষের জন্য বিদ্যুতের সংস্হান করতে না পারি, তাহলে আমরা দারিদ্র দুরীকরণও করতে পারব না”। পর্যটন ক্ষেত্রে বিপুল সম্ভাবনার উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সমগ্র বিশ্ব ভারতে আসার জন্য আগ্রহী। কচ্ছে আমরা দেখেছি, শ্বেতশুভ্র কচ্ছের রণ কিভাবে সমগ্র বিশ্বের দৃষ্টি আকর্ষণ করেছে। অসামরিক বিমান পরিবহন ক্ষেত্রকে আরও সুলভ করে তোলার পাশাপাশি যোগাযোগ ব্যবস্হার উন্নতিতে কেন্দ্রীয় সরকার যে সমস্ত পদক্ষেপ নিয়েছে, প্রধানমন্ত্রী সে কথাও উল্লেখ করেন। সমস্ত গ্রাম ও জনপদে বিদ্যুৎ সংযোগ সুনিশ্চিত করতে যে সকল প্রয়াস নেওয়া হয়েছে, তার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশের প্রতিটি বাড়িতে বিদ্যুৎ পৌঁছে দেওয়ার লক্ষ্যে কাজ চলছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের নির্বাচিত ভাষণের চতুর্থ খন্ডের উদ্বোধন করেছেন। এই উপলক্ষেতাঁর ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের কাছ থেকেদিশা-নির্দেশ তিনি পেয়েছেন, তাতে তিনি বিশেষভাবে উপকৃত হয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, তিনি নিশ্চিত, যাঁরা তাঁর সঙ্গে কাজ করেছেন, তাঁরাও তাঁর সম্বন্ধে এরকমইভাবেন। তিনিরাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়কে বিশিষ্ট জ্ঞানী এবং অত্যন্ত সহজ-সরল বলে বর্ণনাকরেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে কোনও সরকারি বিষয়ে আলোচনাকরলে, রাষ্ট্রপতি তাঁকে পথপ্রদর্শন করতেন এবং গঠনমূলক প্রতিক্রিয়া জানাতেন। রাষ্ট্রপতিপ্রণব মুখোপাধ্যায়ের কার্যকালে রাষ্ট্রপতি ভবন ‘লোক ভবন’-এ পরিণত হয়েছে বলেপ্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর কাজের মেয়াদকালেই ঐতিহাসিকনথির এক অমূল্য সংগ্রহ গড়ে উঠেছে। ২০০১ সালে সংসদে হামলার ঘটনায় শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “২০০১ সালে আমাদের সংসদের ওপর কাপুরুষোচিত হানায় যাঁরা শহীদ হয়েছেন, তাঁদের নির্ভীকতাকে অভিবাদন জানাই। বিনিয়োগ এবং জনসম্পদ পরিচালন দপ্তরকে শত্রু সম্পত্তি আইনের নির্দিষ্ট ধারানুযায়ী এই সম্পত্তিগুলি বিক্রয়ের কর্তৃত্ব/অধিকার দেওয়া হয়েছে। অর্থ মন্ত্রকের সরকারি অ্যাকাউন্টে বিলগ্নীকরণ বাবদ আয় হিসাবে এই অর্থ জমা দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিরপৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা পরিবেশের ক্ষেত্রে ভারত ও ফ্রান্সের মধ্যেসহযোগিতা স্মারকের অনুমোদন দিল| এই সহযোগিতা স্মারক দুই দেশের প্রযোজ্য আইন ও আইনিবিধানের নিরিখে ন্যায্য, পারস্পরিক ও উভয়পক্ষের সুবিধার ওপর ভিত্তি করে পরিবেশরক্ষা ও প্রাকৃতিক সম্পদের পরিচালনার ক্ষেত্রে দুই দেশের ঘনিষ্ট ও দীর্ঘমেয়াদীসহযোগিতা স্থাপন ও একে এগিয়ে নিয়ে যেতে সক্ষম হবে| সরকারইতিমধ্যেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ নীতিকে আরও বিনিয়োগ-বান্ধব করে তুলেছে। অধিকাংশক্ষেত্রগুলিতেই প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগকে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় পদ্ধতিচালিত করেতোলা হয়েছে। সাম্প্রতিক অতীতে প্রতিরক্ষা, নির্মাণ, বিমা, পেনশন, সম্প্রচারব্যবস্থা, বিভিন্ন আর্থিক পরিষেবা, সম্পদের পুনর্গঠন, অসামরিক বিমান পরিবহণ, ওষুধউৎপাদন, ব্যবসা-বাণিজ্য ইত্যাদি ক্ষেত্রে আরও বেশি মাত্রায় বিদেশি বিনিয়োগআকর্ষণের জন্য সংস্কার প্রচেষ্টা বাস্তবায়িত করছে কেন্দ্রীয় সরকার। সরকার গৃহীতবিভিন্ন পদক্ষেপের পরিপ্রেক্ষিতে দেশে প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ আসতেও শুরু করেছেউৎসাহব্যঞ্জকভাবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে, ২০১৮-র ২ – ১৫ই ডিসেম্বর পর্যন্ত পোল্যান্ডের কাটোয়াইসে জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত রাষ্ট্রসংঘের ২৪তম ফ্রেমওয়ার্ক সম্মেলনে ভারতের অবস্থানের কর্মপরবর্তী অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। ২০১৮-র ২৮শে নভেম্বর দেওয়া অনুমোদনের অঙ্গ হিসাবে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। কেন্দ্রীয় পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত মন্ত্রী ডঃ হর্ষবর্ধনের নেতৃত্বে ভারতীয় প্রতিনিধিদলটি এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে অংশগ্রহণ করে। ২০২০-র পরবর্তী সময়ে প্যারিস চুক্তি রূপায়ণে নীতি-নির্দেশিকা চূড়ান্ত করার জন্যই এই সম্মেলন আহ্বান করা হয়েছিল। ভারতের অবস্থান ছিল সমতা-ভিত্তিক এবং অভিন্ন অথচ দেশ-ভিত্তিক দায়িত্বের নীতিতে পরিচালিত। ভারতের পক্ষ থেকে প্যারিস চুক্তি রূপায়ণের প্রতি অঙ্গীকার ব্যক্ত করা হয় এবং সমষ্টিগতভাবে এই চুক্তি রূপায়ণের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়। ২০২০ সালের পরবর্তী পর্যায়ে সমষ্টিগতভাবে ১০ হাজার কোটি মার্কিন ডলারের সমতুল একটি তহবিল গড়ে তোলার বিষয়েও এবারের বৈঠকে আলোচনা হয়েছে। ক্লাব দ্য শেফ্‌স দ্য শেফ্‌স (সিসিসি) অর্থাৎ,বিশ্বের রাষ্ট্র প্রধানদের পাচক তথা রন্ধন বিশারদদের একটি সংগঠনের সদস্যরা আজ এখানে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। দিল্লি ছাড়াও তাঁরাআগ্রা ও জয়পুর ঘুরতে যাবেন। ক্যাডার রিভিউয়ের প্রস্তাব অনুযায়ী, গ্রুপ ‘এ’ পর্যায়ে বর্তমানের ৪,২১০টি পদ বাড়িয়ে ৪,৩০০-তে নিয়ে যাওয়া হবে এইভাবে : 1. স্পেশাল ডিজি পর্যায়ে একটি অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি হবে যা এইচএজি প্লাস পদমর্যাদার। 2. এইচএজি পদমর্যাদার ১১টি অতিরিক্ত পদ সৃষ্টি হবে ইন্সপেক্টর জেনারেল পর্যায়ে। 3. ডিআইজি/কমান্ড্যান্ট/২-১/সি (জেএজি) পর্যায়ের পদ বৃদ্ধি পাবে ২৭৭টি। 4. এসটিএস পর্যায়ে ডেপুটি কমান্ড্যান্টদের ১৯৯টি পদ তুলে দেওয়া হবে। বাহিনীর প্রথম ক্যাডার রিভিউ করা হয় ১৯৮৩ সালে এবং দ্বিতীয়টি ১৯৯১ সালে। ব্রিক্‌স দেশগুলির মধ্যে অসামরিক বিমান পরিবহণ ক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য একটি প্রাতিষ্ঠানিক কাঠামো গড়ে তোলাই এই সমঝোতার লক্ষ্য। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (২৫ ফেব্রুয়ারি, ২০১৯) নতুন দিল্লিতে নেটওয়ার্ক-১৮ ‘উদীয়মান ভারত’ শিখর সম্মেলনে ভাষণ দেন। জাতির উদ্দেশে রাষ্ট্রীয় সমর স্মারক অথবা ‘ন্যাশনাল ওয়ার মেমোরিয়াল’ উৎসর্গ করার কিছুক্ষণ পর ‘উদীয়মান ভারত’ বিষয়ে বলার সুযোগ পেয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেন তিনি। তিনি বলেন, শিখর সম্মেলনের মূল আলোচ্য বিষয় – ‘রাজনীতি ছাড়িয়ে : জাতীয় অগ্রাধিকারের বিষয়গুলির সংজ্ঞা’ – যেটি একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বিষয়। তিনি বলেন, জাতীয় স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে হলে যে ধরণের ফলাফল কাম্য, তাকে বর্ণনা করতে অতীত এবং বর্তমানের মধ্যে পার্থক্য টেনে তারই ওপর তিনি বলবেন। তিনি বলেন, এখন মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বৃদ্ধি ফিরে এসেছে ৭-৮ শতাংশের মধ্যে, যেখানে মুদ্রাস্ফীতি এবং আর্থিক ঘাটতি নিম্নমুখী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়কর বিষয়েও মানুষ সুরাহা পেয়েছে। বিশ্ব ক্রমপর্যায়ে ভারতের কথা বলতে গিয়ে তিনি বলেন, একবিংশ শতাব্দীকে একদা মনে করা হয়েছিল ভারতের শতাব্দী। কিন্তু ২০১৩-র মধ্যে বিশ্বের পাঁচটি ভঙ্গুর অর্থনীতির মধ্যে একটি হয়ে দাঁড়ায় ভারত। কিন্তু আজ ভারত দ্রুততম বর্ধমান প্রধান অর্থনীতি। শ্রী মোদী বলেন, ‘সহজে ব্যবসা করার’ বিষয়ে ক্রমপর্যায়ে এই নিম্নগামিতার একটি কারণ, দুর্নীতি। এই বিষয়ে তিনি কয়লা, কমনওয়েল্‌থ গেম্‌স, স্পেকট্রাম ইত্যাদি সহ সেই সময়ের শিরোনামপ্রাপ্ত বেশ কিছু দুর্নীতির উল্লেখ করেন। তিনি ব্যাখ্যা করে বলেন, কেমনভাবে কেন্দ্রীয় সরকার জন ধন যোজনা দিয়ে শুরু করেছিল, যার অধীনে ৩৪ কোটি ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট খোলা হয়েছে। তিনি বলেন, এই অ্যাকাউন্টগুলি আধার নম্বর এবং মোবাইল ফোনের সঙ্গে যুক্ত করা হয়েছে। তিনি বলেন, আজ প্রায় ৪২৫টি কল্যাণমূলক কর্মসূচির অধীনে প্রাপ্য সুবিধা সরাসরি এইসব ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে পাঠিয়ে দেওয়া হচ্ছে। তিনি বলেন, ৬ লক্ষ কোটি টাকা সরাসরি পৌঁছে দেওয়া হয়েছে সুবিধাপ্রাপকদের কাছে। একইভাবে, ৮ কোটি জাল সুবিধাপ্রাপকের নাম বাদ দেওয়া হয়েছে, বেঁচেছে ১ লক্ষ ১০ হাজার কোটি টাকা। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পেও অপচয়ের সুযোগ নেই কারণ হাসপাতালের অ্যাকাউন্টগুলিতে সরাসরি এই অর্থ জমা পড়ে যাচ্ছে। সুবিধাপ্রাপকদের আধার কার্ড আছে, ২০১৫-র আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার ভিত্তিতে তাঁদের নির্বাচিত করা হয়েছে। তিনি বলেন, একইভাবে প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি-তে অপচয় সম্ভব নয়, যেখানে প্রায় ১২ কোটি কৃষক সরাসরি তাঁদের অ্যাকাউন্টে ঐ সুবিধা পাবেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উত্তরপ্রদেশের বানসাগর বাঁধ এবং ঝাড়খণ্ডের মণ্ডল বাঁধের মতো প্রকল্পগুলির ব্যয় বেড়েছে দেরির কারণে। এই দেরির জন্য গুণাগার দিচ্ছেন সৎ আয়করদাতারা। শ্রী মোদী বলেন, ‘প্রগতি’ উদ্যোগের মাধ্যমে ১২ লক্ষ কোটি টাকার বেশি মূল্যের প্রকল্পগুলির অগ্রগতি তিনি নিজে পর্যালোচনা করেছেন। তিনি বলেন, এর বেশির ভাগ প্রকল্পগুলিই উত্তর-পূর্বে। সরকারের মূল লক্ষ্য পূর্ব ভারতের উন্নতি। তিনি বলেন, এগুলি সম্ভব হত না যদি না কর্মসংস্থানের সুযোগও বাড়ত। তিনি, পেশাদারী ও বাণিজ্যিক গাড়ি বিক্রির সংখ্যা বৃদ্ধি নিয়েও বলেন। শ্রী মোদী বলেন, প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনায় ১৫ কোটিরও বেশি উদ্যোগীকে ৭ লক্ষ কোটি টাকার বেশি ঋণ দেওয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এটাও কর্মসংস্থান বৃদ্ধি করছে। ইপিএফও গ্রাহকদের সংখ্যা বৃদ্ধির উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। মহাকাশে অনুসন্ধান এবং শান্তিপূর্ণ কাজে তা ব্যবহারের ব্যাপারে ভারত এবং সাও তোম ও প্রিন্সেপে-র মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে পরিকাঠামো চুক্তির ব্যাপারে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভাকে অবগত করা হয়েছে। এই পরিকাঠামো চুক্তির ফলে মহাকাশে নতুন নতুন গবেষণা এবং রিমোট সেন্সিং-এর ক্ষেত্রে বিশ্বের বিভিন্ন সম্ভাবনার ব্যাপারে কাজ করা সম্ভব হবে। একইসঙ্গে, উপগ্রহ যোগাযোগ, দিক নির্দেশ এবং মহাকাশ বিজ্ঞান নিয়ে নতুন করে গবেষণা চালানোও যাবে। রবিবার সন্ধ্যায় তেহরান পৌঁছনোর অব্যবহিত পরেই সেখানকার ভাই গঙ্গা সিং সভা গুরুদ্বারে গুরু গ্রন্থ সাহিবকে শ্রদ্ধা ও সম্মান জানান প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। একটি শিরোপা ও একটি তলোয়ার দিয়ে সম্মানিত করা হয় ভারতের প্রধানমন্ত্রীকে। আগ্রার কোঠিমীনা বাজারে এক সভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘গঙ্গাজল প্রকল্প এবং সিসি টিভি ক্যামেরা বসানোর মতো কর্মসূচিগুলি রূপায়ণের মাধ্যমে আগ্রাকে এক স্মার্ট সিটি হিসাবে গড়ে তোলার লক্ষ্যে আমরা অগ্রসর হচ্ছি’। এই সুযোগ-সুবিধাগুলি আরও বেশি পর্যটক আকৃষ্ট করার ক্ষেত্রে সহায়ক হবে বলেও শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন। আয়ুষ্মান ভারত যোজনার আওতায় প্রধানমন্ত্রী আগ্রার এসএন মেডিকেল কলেজের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে এক প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির উচ্ছ্বসিত প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই কর্মসূচি শুরু হওয়ার ১০০ দিনের মধ্যেই ৭ লক্ষেরও বেশি মানুষ উপকৃত হয়েছেন। সাধারণ শ্রেণীর গরিব মানুষের জন্য ১০ শতাংশ সংরক্ষণ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী বলেন, গরিব মানুষের কল্যাণে এ এক সঠিক পদক্ষেপ। অন্যান্য শ্রেণীর ছাত্রছাত্রীদের যাতে অসুবিধায় পড়তে না হয়, তা সুনিশ্চিত করতে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে আরও বেশি সংখ্যক আসনের ব্যবস্থা করা হবে বলেও শ্রী মোদী স্পষ্টভাবে জানান। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘সাধারণ শ্রেণীর গরিব মানুষের জন্য সংরক্ষণের পাশাপাশি, উচ্চতর শিক্ষা, প্রযুক্তি ও পেশাদারী প্রতিষ্ঠানগুলিতে শিক্ষার সুযোগ-সুবিধা আরও বাড়াতে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছি। উচ্চতর শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলিতে পড়ুয়াদের আসন সংখ্যা ১০ শতাংশ বৃদ্ধি করা হয়েছে। অগ্রাধিকারপ্রাপ্ত এই পাঁচটি দিক হ’ল – শিশুদের শিক্ষা, কৃষকের জন্য জলসেচ, যুবদের জীবন-জীবিকা, বয়স্কদের জন্য ওষুধপত্র এবং প্রত্যেকের অভাব-অভিযোগ নিষ্পত্তি। প্রধানমন্ত্রী অম্রুত প্রকল্পের আওতায় আগ্রার পশ্চিমাঞ্চলে নিকাশী ব্যবস্থার মানোন্নয়নের জন্য এক প্রকল্পের শিলান্যাস করেন। অতিরিক্ত কিস্তি বরাদ্দের অনুমোদনদিয়েছে| দ্রব্যমূল্য বৃদ্ধির জন্য ০১ জানুয়ারি ২০১৮ থেকে কার্যকর হওয়া এই বরাদ্দবর্তমানের ৫% বেসিক পে/পেনশনের ওপর ২% বৃদ্ধি হিসেবে কার্যকর হবে| কেন্দ্রীয় সরকারের প্রায় ৪৮.৪১ লক্ষ কর্মচারী এবং ৬১.১৭ লক্ষপেনশনার এর ফলে উপকৃত হবেন| নয়া দিল্লি: ২২ ডিসেম্বর: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গেশুক্রবার নয়া দিল্লিতে সাক্ষাত করলেন গণপ্রজাতন্ত্রী চিনের স্টেট কাউন্সিলর তথাসীমান্ত প্রশ্নে চিনের বিশেষ প্রতিনিধি শ্রী ইয়াং জিয়েচি| প্রধানমন্ত্রীকে শ্রী ইয়াং জিয়েচি চিনের রাষ্ট্রপতি শি জিনপিং ও প্রধানমন্ত্রীলি কেকিয়াং-এর শুভেচ্ছাবার্তা জ্ঞাপন করেন| এর আগে ভারত ও চিনের সীমান্ত প্রশ্নে দুই দেশের বিশেষ প্রতিনিধিদের ২০তমবৈঠক অনুষ্ঠিত হয়| শ্রী ইয়াং জিয়েচি এবং শ্রী অজিত দোভাল প্রধানমন্ত্রীকে সেইবৈঠকের বিষয়ে অবহিত করেন| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বারানসী সফর করেন। তিনি ২ হাজার ৪০০ কোটি টাকার বিভিন্ন প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন। প্রধানমন্ত্রী গঙ্গানদীর ওপর মাল্টি-মডেল টার্মিনালটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেন এবং প্রথম পণ্য পরিবাহী কার্গো’কে স্বাগত জানান। এছাড়াও, বারানসীতে বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্পের উদ্বোধন ও শিলান্যাস করেন তিনি। এক বিশাল জনসভায় ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পূর্ব ভারত তথা পূর্বাঞ্চল ও কাশীর জন্য সামগ্রিকভাবে সারা দেশের জন্য আজকের দিনটি ঐতিহাসিক। আজ যে উন্নয়নমূলক কাজ হয়েছে, তা আরও বহুযুগ আগেই শেষ হতে পারতো। তিনি বলেন, বারানসীর সঙ্গে সঙ্গে সারা দেশ এখন প্রত্যক্ষ করছে যে, কি করে পরবর্তী প্রজন্মের পরিকাঠামো যোগাযোগের মাধ্যমকে বদলে দিতে পারে। বারানসীতে প্রথম আন্তঃজলপথ পণ্য পরিবাহী জাহাজটির আগমনের প্রসঙ্গ উত্থাপন করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পূর্ব উত্তর প্রদেশ বর্তমানে জলপথে বঙ্গোপসাগরের সঙ্গে সংযুক্ত। সড়ক যোগাযোগ ও নমামি গঙ্গে সহ অন্যান্য যে প্রকল্পগুলির উদ্বোধন ও শিলান্যাস হয়েছে সেগুলির বিষয়েও তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, বাবদপুর বিমানবন্দরের সঙ্গে বারানসীর সংযোগকারী যে রাস্তাটি তৈরি হয়েছে, এটি চলাচলের সুবিধা প্রদানের পাশাপাশি পর্যটকদের জন্যও আকর্ষণীয় হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আধুনিক পরিকাঠামো ব্যবস্থা গত চার বছরে উন্নয়নে দ্রুত গতি এনেছে। দূরবর্তী এলাকায় বিমানবন্দর, উত্তর-পূর্ব ভারতের সঙ্গে রেল যোগাযোগ ব্যবস্থা ও নানা সড়ক কেন্দ্রীয় সরকারের কাজের পরিচয় বহন করছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এখনও পর্যন্ত নমামি গঙ্গে প্রকল্পে ২৩ হাজার কোটি টাকার কাজের অনুমোদন দেওয়া হয়েছে। গঙ্গা তীরবর্তী গ্রামগুলি সহ প্রায় সব গ্রামই এখন খোলা জায়গায় শৌচমুক্ত। ফ্রান্সের ইউরোপ বিষয়ক ও বিদেশ মন্ত্রী মিঃ জিন-ভেস লি ড্রিয়ান শনিবার নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। ফ্রান্সের স্ট্রসবুর্গে সাম্প্রতিক জঙ্গী হামলায় হতাহতদের প্রতি প্রধানমন্ত্রী তাঁর আন্তরিক সমবেদনা জ্ঞাপন করে বলেন, সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে ভারত সর্বদাই সেদেশের পাশে রয়েছে। গত মার্চ মাসে রাষ্ট্রপতি ম্যাক্রোর ভারত সফরের পাশাপাশি আর্জেন্টিনায় আয়োজিত জি-২০ শীর্ষ সম্মেলনের ফাঁকে দু’জনের মধ্যে সাক্ষাতের কথাও প্রধানমন্ত্রী বিশেষভাবে স্মরণ করেন। মিঃ লি ড্রিয়ান দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কে সাম্প্রতিক অগ্রগতির বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করে আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে ফ্রান্সের দৃষ্টিভঙ্গীর কথা ব্যক্ত করেন। তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের সিইও এবং আন্তর্জাতিক বিশেষজ্ঞদের সঙ্গে সোমবার একআলোচনা বৈঠকে মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। রসনেফট্‌, বিপি,রিলায়েন্স, সৌদি অ্যারামকো, এক্সন মোবিল, রয়্যাল ডাচ শেল, বেদান্ত, উড ম্যাকেনজি,আইএইচএস মার্কিট, স্কালমবার্গার, হ্যালিবাটন্‌, এক্সকোল, ওএনজিসি, ইন্ডিয়ান অয়েল,গেইল, পেট্রোনেট এলএনজি, অয়েল ইন্ডিয়া, এইচপিসিএল, ডেলোনেক্স এনার্জি, এনআইপিএফপি,ইন্টারন্যাশনাল গ্যাস ইউনিয়ন, বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং ইন্টারন্যাশনাল এনার্জি এজেন্সিরসিইও এবং আধিকারিকরা যোগ দেন এই বৈঠকে। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও শ্রী আরকে সিং ছাড়াও আলোচনাবৈঠকে উপস্থিত ছিলেন নীতি আয়োগ, প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর, পেট্রোলিয়াম মন্ত্রক এবংঅর্থ মন্ত্রকের পদস্থ আধিকারিকরা। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের সিইও-দের এই আলোচনা বৈঠকেসমন্বয়ের দায়িত্ব পালন করে নীতি আয়োগ। কেন্দ্রীয় পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাসদপ্তরের মন্ত্রী শ্রী ধর্মেন্দ্র প্রধান ও শ্রী রাজীব কুমার সিং এবং নীতি আয়োগেরভাইস চেয়ারম্যান তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের কাজকর্ম ও সাফল্যের একটি সংক্ষিপ্ত চিত্রতুলে ধরেন বৈঠকের সূচনায়। একটি সংক্ষিপ্ত উপস্থাপনার মাধ্যমে সাম্প্রতিককালে ভারতের তেল ও গ্যাসক্ষেত্রে যে উন্নয়ন ও চ্যালেঞ্জ লক্ষ্য করা গেছে, তা এদিন সকলের কাছে তুলে ধরেননীতি আয়োগের সিইও শ্রী অমিতাভ কান্ত। গত তিন বছরে ভারতে সংস্কার ও অগ্রগতি প্রচেষ্টার ভুয়সী প্রশংসা করেন বৈঠকেউপস্থিত সিইও এবং আধিকারিকরা। জ্বালানি ক্ষেত্রের সংস্কার প্রচেষ্টায় যে গতি ওচালিকাশক্তি এনে দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী তারও উচ্চকিত প্রশংসাকরেন তাঁরা। এক অভিন্ন জ্বালানি নীতি, ঠিকা সম্পর্কিত কাঠামোগত ব্যবস্থা, ভূ-কম্পনসম্পর্কিত তথ্য ও পরিসংখ্যান, জৈব জ্বালানি ব্যবহারে উৎসাহদান, গ্যাসের যোগানবৃদ্ধি, একটি গ্যাস হাব গড়ে তোলা এবং নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থা সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়েরওপর তাঁরা আলোকপাত করেন। জিএসটি’র কাঠামোর মধ্যে গ্যাস ও বিদ্যুতের অন্তর্ভুক্তিরসমর্থনে অংশগ্রহণকারীদের অনেকেই জোরালো সুপারিশ করেন। কেন্দ্রীয় রাজস্ব সচিব শ্রীহাসমুখ আধিয়া তাঁর বক্তব্যে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্র সম্পর্কে জিএসটি পরিষদেরসাম্প্রতিক সিদ্ধান্তগুলি ব্যাখ্যা করেন এদিনের আলোচনা বৈঠকে। বৈঠকে উপস্থিত অন্যান্যদের আলোচনা ও মতামতের জন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানানপ্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, গত বছর অর্থাৎ ২০১৬’তে অনুষ্ঠিত শেষ বৈঠকটিতে এমন অনেকপ্রস্তাব ও সুপারিশ পাওয়া গেছে, যা নীতি রচনার ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সাহায্য করেছে।বিভিন্ন ক্ষেত্রে এখনও যথেষ্ট মাত্রায় সংস্কারের সুযোগ ও সম্ভাবনা রয়েছে বলে তিনিউল্লেখ করেন। এদিনের বৈঠকে উপস্থিত সিইও আধিকারিকরা যেভাবে মূল্যবান প্রস্তাব ওপরামর্শ পেশ করেছেন, সেজন্য তাঁদের ধন্যবাদ জানান শ্রী মোদী। বৈঠকে অংশগ্রহণকারী সিইও এবং আধিকারিকরা শুধুমাত্র তাঁদের নিজের নিজেরসংস্থা ও প্রতিষ্ঠানের সমস্যা ও সম্ভাবনাকে তুলে না ধরে সার্বিকভাবে তেল ও গ্যাসক্ষেত্রের সার্বিক উন্নয়নে যেভাবে মতামত পেশ করেছেন, সেজন্য তাঁদের বিশেষ প্রশংসাওকরেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, যে সমস্ত প্রস্তাব ও পরামর্শ এদিনের বৈঠকে উঠেএসেছে তা নীতি, প্রশাসন এবং নিয়ন্ত্রক ব্যবস্থার ক্ষেত্রে যথেষ্ট মূল্যবান। ভারতের শক্তি ও জ্বালানি ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসারে দৃঢ় অঙ্গীকারের জন্যরাশিয়ার প্রেসিডেন্ট মিঃ ভ্লাদিমির পুতিন এবং রসনেফ্‌ট কর্তৃপক্ষকে অশেষ ধন্যবাদজানান শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ২০৩০ সালের লক্ষ্যে সৌদি আরবের গৃহীত দৃষ্টিভঙ্গিরওবিশেষ প্রশংসা করেন তিনি। তাঁর সৌদি আরব সফরের কথা বিশেষভাবে স্মৃতিচারণ করেপ্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ঐ দেশে জ্বালানি ক্ষেত্রের প্রসার ও উন্নয়নে বেশ কিছুপ্রগতিশীল সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে ভারত ও সৌদি আরবের মধ্যেসহযোগিতার নতুন নতুন সুযোগ দেখা দেবে বলে আশা ব্যক্ত করেন তিনি। শ্রী মোদী বলেন, ভারতের জ্বালানি ক্ষেত্রটি বর্তমানে যে অবস্থায় রয়েছে, তারউন্নতি ঘটানো প্রয়োজন। একটি সুসংবদ্ধ জ্বালানি নীতি অনুসরণের জন্য বিভিন্নপ্রস্তাব ও পরামর্শকে স্বাগত জানান তিনি। পূর্ব ভারতে জ্বালানি পরিকাঠামোর প্রসার এবংজ্বালানি শক্তিকে সুলভ করে তোলার প্রয়োজনীয়তা রয়েছে বলে তিনি মনে করেন। বায়োমাসজ্বালানির সম্ভাবনার বিষয়টিকেও বিশেষভাবে গুরুত্ব দেন প্রধানমন্ত্রী। কয়লা থেকেগ্যাস উৎপাদনের লক্ষ্যে যৌথ উদ্যোগের ওপর জোর দিয়ে তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রের উদ্ভাবনও গবেষণা প্রচেষ্টার সম্ভাবনার বিষয়গুলিকে আন্তরিকভাবে স্বাগত জানান তিনি। কেন্দ্রের অতিরিক্ত সচিব এবং যুগ্ম সচিব পর্যায়ের ৮০ জন আধিকারিকের সঙ্গে এক আলোচনা ওমতবিনিময় বৈঠকে শনিবার মিলিত হন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই পর্যায়েরশীর্ষ আধিকারিকদের সঙ্গে এটি হল প্রধানমন্ত্রীর তৃতীয় দফার বৈঠক। কৃষি, পানীয়জল, নাগরিক-কেন্দ্রিক সরকারি প্রশাসন ও পরিচালন ব্যবস্থা, উদ্ভাবন, প্রশাসনিকক্ষেত্রে যৌথভাবে কাজ করে যাওয়া, প্রকল্প রূপায়ণ, শিক্ষা, নির্মাণ ও উৎপাদন,অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা এবং সৌরশক্তির মতো বিষয়গুলিতে আধিকারিকরাতাঁদের অভিজ্ঞতা ওমতামত তুলে ধরেন প্রধানমন্ত্রীর কাছে। বিভিন্ন প্রকল্পেরকাজ পর্যালোচনার লক্ষ্যে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ‘প্রগতি’ কর্মসূচির কথা উল্লেখ করেনআধিকারিকদের কাছে। নির্মাণ ও উৎপাদন প্রসঙ্গে তিনি বলেন যে বৈদ্যুতিন সাজ-সরঞ্জামউৎপাদনের পরিবেশকে এমনভাবে গড়ে তুলতে হবে যাতে চিকিৎসার সাজ-সরঞ্জাম উৎপাদনের দিকেআরও বেশি করে নজর দেওয়া যায়। নতুন নতুন আইন যেমন রচিতহচ্ছে, অন্যদিকে তেমনই অপ্রয়োজনীয় প্রাচীন আইনগুলিকে বিদায় জানানোওপ্রয়োজন। • ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট মাননীয় জোকো উইডোডোভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর আমন্ত্রণে রাষ্ট্রীয়ভাবে এ দেশ সফর করেন১১ থেকে ১৩ ডিসেম্বর, ২০১৬ পর্যন্ত। প্রেসিডেন্ট উইডোডো এই প্রথম এক দ্বিপাক্ষিকসফরে ভারতে এলেন। • ভারতের রাষ্ট্রপতি শ্রী প্রণব মুখোপাধ্যায়ের সঙ্গে১২ ডিসেম্বর, ২০১৬ তারিখে এক বৈঠকে মিলিত হন প্রেসিডেন্ট উইডোডো। ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদীর সঙ্গে বিভিন্ন দ্বিপাক্ষিক, আঞ্চলিক তথা আন্তর্জাতিক বিষয়েবিস্তারিতভাবে আলোচনা ও মতবিনিময় করেন তিনি। বহুত্ববাদ, গণতন্ত্র, আইনের শাসনইত্যাদিকে শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানের ক্ষেত্রে বিশেষ মূল্যবান বলে মনে করেন দুইরাষ্ট্র নেতাই। দু’দেশের মধ্যে রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক এবং কৌশলগত স্বার্থ রক্ষায় একদীর্ঘস্থায়ী কৌশলগত সম্পর্ক গড়ে তোলার ওপর জোর দেন তাঁরা। • ২০০৫-এর নভেম্বরে কৌশলগত অংশীদারিত্ব সম্পর্কেসিদ্ধান্ত গ্রহণের পর দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের ক্ষেত্রে যে এক বিশেষ জোয়ার এসেছে, সেকথা স্বীকার করেন দুই নেতাই। ইন্দোনেশিয়ার তৎকালীন প্রেসিডেন্টের ২০১১-রজানুয়ারিতে ভারত সফরকালে ভবিষ্যতের দশকগুলির জন্য যে কৌশলগত নতুন অংশীদারিত্বেরসম্পর্ক গড়ে তোলার বিষয়টি চিহ্নিত করা হয়, তাতে দু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কআরও নিবিড় ও জোরদার হয়ে উঠেছে বলে মনে করেন শ্রী মোদী এবং মিঃ উইডোডো। ২০১৪ সালের১৩ নভেম্বর আসিয়ান শীর্ষ বৈঠকের পাশাপাশি, তাঁদের মধ্যে অনুষ্ঠিত প্রথমআলোচনা-বৈঠকের কথা প্রসঙ্গত স্মরণ করেন দুই নেতাই। কৌশলগতসহযোগিতার সম্পর্ক • পারস্পরিক স্বার্থ-সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলি ছাড়াওঅন্যান্য বিভিন্ন ক্ষেত্রে আলোচনা ও মতবিনিময়ের লক্ষ্যে প্রতি বছর শীর্ষ বৈঠকেআয়োজনের প্রস্তাবে সম্মতি প্রকাশ করেন শ্রী মোদী এবং মিঃ উইডোডো। আগামী ২০২৫ সাল পর্যন্তদু’দেশের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্কের গতিপ্রকৃতি নির্ধারণ করার চেষ্টা করা হয়েছে ঐবিশেষ দলিলটিতে। • ২০১৫-র সেপ্টেম্বরে লাপান-এ২ এবং ২০১৬-র জুনেলাপান-এ৩ উপগ্রহের সফল উৎক্ষেপণেও সন্তোষ প্রকাশ করেন দুই নেতা। প্রতিরক্ষাও নিরাপত্তা সহযোগিতা • ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তাসহযোগিতাকে আরও নিবিড় করে তোলার ওপর গুরুত্ব আরোপ করেন শ্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্টউইডোডো। দু’দেশেরস্বার্থে ওষুধ উৎপাদন শিল্পেও সহযোগিতার ক্ষেত্র প্রসারের বিষয়টিকে উৎসাহ দেনতাঁরা। ইন্দোনেশিয়ার চাহিদা পূরণে চাল, চিনি ও সয়াবিনযোগান দেওয়ার জন্য ভারত প্রস্তুত বলে প্রেসিডেন্ট উইডোডো-কে জানান শ্রী নরেন্দ্রমোদী। ভারতের বিমান পরিবহণসংস্থাগুলির উদ্যোগে ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার মধ্যে বিমান চলাচলের প্রস্তাবটিকেওসমর্থন জানান তাঁরা। একইসঙ্গে, দু’দেশের মধ্যে সরাসরি জাহাজ চলাচল, নৌ-বন্দর ওবিমানবন্দর উন্নয়ন প্রকল্পে বেসরকারি বিনিয়োগ, সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বেরমাধ্যমে বন্দরগুলির সার্বিক বিকাশ ইত্যাদি প্রসঙ্গও স্থান পায় দুই নেতার আলোচনা ওমতবিনিময়কালে। • দু’দেশের মধ্যে বাণিজ্যিক প্রসারে নির্দিষ্টগুনমান বজায় রাখা সম্পর্কিত দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারের বিষয়টিকেও যথেষ্টগুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করেন শ্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট উইডোডো। এই প্রসঙ্গেইন্দোনেশিয়ার মান নির্ণায়ক সংস্থা বি এস এন এবং ভারতের মান নির্ণায়ক সংস্থা বি আইএস-এর মধ্যে মউ স্বাক্ষরের স্বাগত জানান তাঁরা। সাংস্কৃতিকবন্ধন তথা জনসংযোগ • ভারত ও ইন্দোনেশিয়ার তরুণ প্রজন্মের ক্ষমতায়নেরলক্ষ্যে শিক্ষা ও মানবসম্পদ বিকাশ ক্ষেত্রে বিনিয়োগের গুরুত্বের কথা তুলে ধরেনশ্রী মোদী এবং প্রেসিডেন্ট উইডোডো। দু’দেশের বিশ্ববিদ্যালয়গুলির মধ্যেপ্রাতিষ্ঠানিকভাবে সহযোগিতা প্রসারের যে কর্মসূচিগুলি বর্তমানে রূপায়িত হচ্ছে,সেগুলিকে আরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা বলেন তাঁরা। উচ্চতর শিক্ষাক্ষেত্রে একটিচুক্তির দ্রুত সম্পাদনের প্রয়োজনীয়তার কথা তুলে ধরে দুই নেতাই এই বিষয়টিতেপ্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণের নির্দেশ দেন সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষগুলিকে। সাধারণচ্যালেঞ্জগুলির মোকাবিলায় পারস্পরিক সহযোগিতা • দুই বিশ্ব নেতাই যে কোন ধরনের সন্ত্রাসের কঠোরনিন্দা করেন। তাঁরা বলেন, সন্ত্রাসের ঘটনার মোকাবিলায় সহনশীলতার কোন প্রশ্ন নেই।সন্ত্রাস যেভাবে বিশ্ব জুড়ে তাণ্ডব শুরু করেছে, তাতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করেনতাঁরা। সন্ত্রাস দমনে ইউ এন এস সি প্রস্তাব ১২৬৭-এর বাস্তবায়নে তাঁরা আহ্বান জানানবিশ্বের সবক’টি রাষ্ট্রকে। সন্ত্রাসবাদীদের নিরাপদ ঘাঁটি ও আশ্রয়গুলিকে নির্মূলকরে দেওয়ারও ডাক দেন তাঁরা। দুই নেতাই মনে করেন যে সন্ত্রাসবাদীদের নেটওয়ার্ক এবংঅর্থ যোগানের পথগুলি বন্ধ করে দিলে জঙ্গিরা যথেষ্ট দুর্বল হয়ে পড়বে এবং তার ফলেসীমান্ত সন্ত্রাসও কার্যকরভাবে দমন করা সম্ভব হবে। সন্ত্রাস দমনে দুটি দেশের মধ্যেআরও বেশি মাত্রায় গোয়েন্দা তথ্য বিনিময়ের ওপরও জোর দেন তাঁরা। দক্ষিণ চিন সাগর প্রসঙ্গে দুই নেতাই শান্তিপূর্ণ উপায়ে বিরোধ নিষ্পত্তিরওপর গুরুত্ব আরোপ করেন। • আঞ্চলিক পর্যায়ে সুসংবদ্ধ অর্থনৈতিক সহযোগিতাচুক্তির দ্রুত সম্পাদনের ওপরও বিশেষ জোর দেন দুই বিশ্ব নেতা। দুইনেতার মধ্যে অনুষ্ঠিত আলোচনা ও মতবিনিময়ের পরিপ্রেক্ষিতে ২০১৭-র প্রথমার্ধে যেসমস্ত সংস্থা ও সংগঠনের বৈঠকের মাধ্যমে এবং বিভিন্ন উপায়ে পারস্পরিক সহযোগিতাকেআরও এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয় সেগুলি হল – i. মন্ত্রী পর্যায়ের যৌথ কমিশন ii. প্রতিরক্ষা মন্ত্রীদের আলোচনা এবং যৌথ প্রতিরক্ষাসহযোগিতা কমিটির বৈঠক iii. বাণিজ্য মন্ত্রী ফোরামের বৈঠক iv. জ্বালানি সহযোগিতার লক্ষ্যে পন্থাপদ্ধতি উদ্ভাবনেরজন্য জ্বালানি ফোরামের বৈঠক v. নিরাপত্তা সহযোগিতার বিষয়ে একটি সুসংবদ্ধকার্যসূচি গড়ে তোলার লক্ষ্যে নিরাপত্তা সংক্রান্ত আলোচনা-বৈঠক ইত্যাদি। বিপন্ন ও বিপদগ্রস্ত বিদেশের ভারতীয় সম্প্রদায়কে সহায়তাদানএবং সমষ্টি কল্যাণ সম্পর্কিত কর্মপ্রচেষ্টার প্রসার সহ বিভিন্ন ক্ষেত্রে এইতহবিলের সাহায্যে প্রয়োজনীয় সহায়তা পৌঁছে দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট পরিবারগুলির কাছে। বিদেশেভারতীয় নাগরিকরা সহায়তা প্রার্থনার জন্য ভারতীয় দূতাবাসগুলিরমাধ্যমে আবেদন পেশকরতে পারবেন। বিদেশেবিপদের মুহূর্তে ভারতীয় নাগরিকদের সাহায্য করা ছাড়াও লিবিয়া, ইরাক, ইয়েমেন, দক্ষিণসুদান সহ বিভিন্ন রাষ্ট্রে সংঘাত চলাকালীন ভারতীয়দের উদ্ধার করে নিয়ে আসা হয়আপৎকালীন পরিস্থিতিতে। ত্রাণ ও উদ্ধারের ক্ষেত্রে ভারতের তৎপরতার বিষয়টি ইতিমধ্যেইপ্রশংসা লাভ করেছে আন্তর্জাতিক মহলের। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পবিত্র মিলাদ-উন-নবি উপলক্ষে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক শুভেচ্ছা বার্তায় তিনি বলেছেন, “মিলাদ-উন-নবি উপলক্ষে শুভেচ্ছা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আগামীকাল (১২ জুলাই) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে জাতীয় গ্রামীণ জীবন-জীবিকা মিশনের দীনদয়াল অন্তদ্বয় যোজনার অধীন স্বনির্ভর গোষ্ঠীর সদস্য এবং দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল্য যোজনার সুবিধাভোগীদের সঙ্গে সরাসরি মতবিনিময় করবেন। দীনদয়াল উপাধ্যায়- জাতীয় গ্রামীণ জীবন-জীবিকা মিশন মহিলা ক্ষমতায়ণের ক্ষেত্রে বৃহৎ এক প্রাতিষ্ঠানিক মঞ্চ হয়ে উঠেছে। এই কর্মসূচিটি ২৯টি রাজ্য ও ৫টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের ৬০০টি জেলার ৪ হাজার ৮৮৪টি ব্লকে রূপায়নের উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ২০১৮-র মে মাস পর্যন্ত ৪৫ লক্ষ স্বনির্ভর গোষ্ঠীর মাধ্যমে ৫ কোটিরও বেশি মহিলা বিভিন্ন কাজকর্মে সামিল হয়েছেন। নতুন দিল্লীতে বৃহস্পতিবার (২৭ ডিসেম্বর) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা কোস্টাল রেগুলেশন জোন (সিআরজেড), তথা উপকূল নিয়ন্ত্রণ এলাকা সংক্রান্ত বিজ্ঞপ্তি, ২০১৮ অনুমোদন করেছে। বিভিন্ন পর্যায়ে সংশোধনী এবং আইনি প্রক্রিয়ার মধ্য দিয়ে যাওয়া এই বিজ্ঞপ্তিটি বিগত ২০১১ সালে শেষবারের মতো পর্যালোচনার পর তা জারি করা হয়েছিল। এর ফলে, কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হবে। ভারত ও পর্তুগালের মধ্যে কৃষি সহ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে একসহযোগিতা চুক্তির প্রস্তাব আজ অনুমোদিত হল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীরনেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রস্তাবিত চুক্তিটির আওতায় রয়েছে কৃষি ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রেবৈজ্ঞানিক ও কারিগরি তথ্য বিনিময়, গাছ ও বৃক্ষজাত পণ্যের বাণিজ্যিক প্রসার,প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, আলোচনা ও মতবিনিময় এবং দুটি দেশের মধ্যে বিশেষজ্ঞ ওপরামর্শদাতাদের সফর বিনিময়। মালয়েশিয়ার মাননীয় প্রধানমন্ত্রী দাতো শ্রী মহম্মদ নাজিব তুন আব্দুল রাজাক-এর আমন্ত্রণে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সরকারিভাবে মালয়েশিয়া সফর করেন ২৩ নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে। এর আগে তিনি আসিয়ান-ভারত শীর্ষ বৈঠক এবং পূর্ব এশিয়া শীর্ষ বৈঠকে অংশগ্রহণ করেন ২১-২২ নভেম্বর, ২০১৫ তারিখে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী এফআইজি ওয়ার্ল্ড চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার ভল্ট ইভেন্টে স্বর্ণ পদক জেতায় দীপা কর্মকারকে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “দীপা কর্মকারের সাফল্যে ভারত গর্বিত। তুরস্কের মার্সিনে এফআইজি ওয়ার্ল্ড চ্যালেঞ্জ প্রতিযোগিতার ভল্ট ইভেন্টে স্বর্ণপদক জয়ের জন্য তাঁকে অনেক অনেক অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ (২৪ অক্টোবর) ভারত ও মালাউই-র মধ্যে অপরাধীদের প্রত্যাবর্তন চুক্তির অনুমোদন ও স্বাক্ষরে সায় জানানো হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ আমেদাবাদের যসপুরে বিশ্ব ঊমিয়াধাম কমপ্লেক্সের শিলান্যাস করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের সাধু-সন্ন্যাসীরা অতীতের সেরা দিকগুলি যাতে আমরা নিজেদের মধ্যে নিয়ে নিতে পারি, সেই শিক্ষা দিয়েছেন এবং একই সঙ্গে সময়ের পরিবর্তনের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলার শিক্ষাও তাঁরা দিয়ে গেছেন। সামাজিক স্তরে, দেশের তরুণ সম্প্রদায়কে সেরা মানের শিক্ষা দেওয়াই গুরুত্বপূর্ণ বলে প্রধানমন্ত্রী মন্তব্য করেন। শ্রী মোদী এও বলেন, যাঁরা মা ঊমিয়া-কে বিশ্বাস করেন, তাঁরা কখনই কন্যাভ্রূণ হত্যাকে সমর্থন করবেন না। এ প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী লিঙ্গ বৈষম্য বিহীন সমাজ সৃষ্টি করার আবেদন রাখেন জনসাধারণের কাছে। মহামান্য অতিথি, ২০১৫-র আগস্টে এবং গত বছরফেব্রুয়ারি মাসে আমাদের আগের সাক্ষাৎগুলির কথা ভালোরকমই স্মরণে রয়েছে আমার। মহামান্য অতিথি, আপনার নেতৃত্বে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের নতুন নতুন ক্ষেত্রঅন্বেষণের কাজে আমরা সাফল্য অর্জন করেছি। আমাদের সুসংবদ্ধ কৌশলগত অংশীদারিত্বকেউদ্দেশ্যপূর্ণ এবং কর্মমুখী করে তোলার ক্ষেত্রে আমরা গড়ে তুলেছি কর্মপ্রচেষ্টার একউচ্চাকাঙ্খামূলক রূপরেখা। কিছুক্ষণ আগে যে চুক্তিপত্রটি স্বাক্ষরিত হয়েছে তাআমাদের এই সমঝোতার সম্পর্ককে এক প্রাতিষ্ঠানিক আকার দান করেছে। বিশ্বের এক গুরুত্বপূর্ণ অঞ্চলেসংযুক্ত আরব আমীরশাহী হ’ল আমাদের মূল্যবান অংশীদারদের অন্যতম এবং সেই সঙ্গে আমাদেরএক ঘনিষ্ঠ মিত্রও। মহামান্য অতিথির সঙ্গে আমি কিছুক্ষণ আগেই সম্পূর্ণ করলাম আমাদেরএক বিশেষ ফলপ্রসূ ও সফল আলোচনা বৈঠক। অতীতের দুটি বৈঠককালে গৃহীত বিভিন্নসিদ্ধান্তের রূপায়ণের ওপর বিশেষ দৃষ্টি দিয়েছি আমরা। জ্বালানি ও বিনিয়োগ সহ আমাদেরসম্পর্কের প্রধান প্রধান ক্ষেত্রগুলির কাজকর্ম নিরন্তর করে তোলার প্রশ্নেও আমরাসহমত হয়েছি। ভারতের অগ্রগতির ইতিহাসে সংযুক্ত আরবআমীরশাহীকে আমরা এক গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলেই মনে করি। ভারতের পরিকাঠামো ক্ষেত্রেসংযুক্ত আরব আমীরশাহীর আগ্রহকে আমি বিশেষভাবে স্বাগত জানাই। সংযুক্ত আরব আমীরশাহীরপ্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের আমাদের জাতীয় বিনিয়োগ ও পরিকাঠামো তহবিলের সঙ্গে যুক্তকরার লক্ষ্যে কাজ করে চলেছি আমরা। দুবাই’তে বিশ্ব এক্সপো ২০২০-র জন্য পরিকাঠামোপ্রকল্প রূপায়ণের কাজে ভারতীয় সংস্থাগুলিকে আগ্রহী অংশীদার করে তোলার লক্ষ্যে আমিমতবিনিময় করেছি মহামান্য অতিথির সঙ্গে। উৎপাদন তথা পরিষেবা ক্ষেত্রে আমাদের অগ্রগতিরসঙ্গে যুক্ত হলে লাভবান হতে পারে সংযুক্ত আরব আমীরশাহী। ভারতে ডিজিটাল অর্থনীতি,মানব মূলধন এবং স্মার্টনগরী গড়ে তোলার কাজে আমরা দুটি দেশই প্রচুর সুযোগ-সুবিধাআহরণ করতে পারি। দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের মান ও মাত্রা বৃদ্ধির লক্ষ্যে শিল্প ওবাণিজ্য ক্ষেত্রকে দুটি দেশই বিশেষভাবে উৎসাহদান করেছে। বাণিজ্যিক সংস্কারসম্পর্কিত যে চুক্তিটি আজ স্বাক্ষরিত হয়েছে, তা আমাদের বাণিজ্যিক সম্পর্ককে আরওনিবিড় করে তুলবে। আমাদের দু’দেশের সম্পর্কের ক্ষেত্রে এক গুরুত্বপূর্ণ সেতুবন্ধনগড়ে তুলেছে জ্বালানি ক্ষেত্রে আমাদের পারস্পরিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক। তার মধ্যদিয়ে নিশ্চিত হয়ে উঠতে পারে জ্বালানি নিরাপত্তার বিষয়টিও। সুনির্দিষ্ট প্রকল্প ওপ্রস্তাবের মাধ্যমে আমাদের জ্বালানি সম্পর্ককে এক কৌশলগত দিকে চালিত করারপন্থাপদ্ধতি সম্পর্কে মহামান্য অতিথির সঙ্গে আলোচনা ও মতবিনিময় করেছি আমি। এইবিশেষ ক্ষেত্রটিতে দীর্ঘমেয়াদী সরবরাহ চুক্তি এবং যৌথ উদ্যোগের প্রতিষ্ঠা বিশেষলাভজনক হয়ে উঠতে পারে। আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের ক্ষেত্রেএক নতুন মাত্রা যোগ করেছে দু’দেশের প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা সহযোগিতা। প্রায় ২৬ লক্ষ ভারতীয়র বসবাস সংযুক্তআরব আমীরশাহীতে। তাঁদের অবদানকে বিশেষ মূল্যবান বলে মনে করে ভারত ও সংযুক্ত আরবআমীরশাহী। ঐ দেশে ভারতীয় নাগরিকদের কল্যাণের প্রতি বিশেষভাবে নজর দেওয়ার জন্য আমারকৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছি মহামান্য অতিথির কাছে। আবুধাবি’তে ভারতীয় সম্প্রদায়ের একটিমন্দির নির্মাণের জন্য একটি জমি নির্দিষ্ট করার জন্যও আমি ধন্যবাদ জানিয়েছিমহামান্য অতিথিকে। আমাদের অংশীদারিত্বের সম্পর্ককে সফলকরে তোলার লক্ষ্যে সংযুক্ত আরব আমীরশাহীর প্রেসিডেন্ট মহামান্য শেখ খলিফা বিনজায়েদ আল নাহিয়ান এবং মাননীয় শেখ মহম্মদের ব্যক্তিগত আগ্রহের জন্য আমরা বিশেষভাবেকৃতজ্ঞ। এই সম্পর্ককে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজে পারস্পরিক সহযোগিতার এক নতুন ক্ষেত্রআবিষ্কৃত হতে চলেছে। মহামান্য অতিথি, আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে, আপনার এই সফরআমাদের পূর্ববর্তী আলোচনা ও মতবিনিময়ের মাধ্যমে যে সমঝোতা ও সুফল আমরা লাভ করেছিতার ওপর নির্ভর করেই গড়ে উঠবে ভবিষ্যতের সহযোগিতা সম্পর্ক। তাঁর এবং তাঁর প্রতিনিধিদলের সদস্যদের ভারতে অবস্থান আনন্দময় হয়ে উঠুক এইপ্রার্থনা জানাই। ইয়ুনমো সাং, বাণিজ্য, শিল্প ও শক্তি মন্ত্রী, বিশিষ্ট বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দ, শুভ অপরাহ্ন। সিওলে আজ আপনাদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে আমি আনন্দিত। মাত্র ১২ মাসে দক্ষিণ কোরিয়ার বাণিজ্যিক নেতৃবর্গের সঙ্গে এটি আমার তৃতীয় আলাপচারিতা। দক্ষিণ কোরিয়া থেকে ভারতে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং বিনিয়োগ যাতে বৃদ্ধি পায়, সে বিষয়ে আমি অত্যন্ত আগ্রহী। আমি যখন গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী ছিলাম তখনও দক্ষিণ কোরিয়া সফর করেছি। দক্ষিণ কোরিয়া আমার কাছে অর্থনৈতিক বিকাশের আদর্শস্বরূপ। · এমন একটি অর্থনীতি যা সারা বিশ্বের সঙ্গে একত্রে সংযুক্ত। · এমন একটি অর্থনীতি, যেটি লাল ফিতের বন্ধন থেকে বেড়িয়ে লাল কার্পেটের দিকে এগোচ্ছে। ভারতে বর্তমানে সুযোগ বেড়েছে। আমরা ভারতের স্বপ্নকে বাস্তবায়িত করার লক্ষ্যে যখন কাজ করে চলেছি, তখন আমাদের সহযোগী হিসেবে চেয়েছি সম-মানসিকতাসম্পন্ন সহযোগী। এদের মধ্যে আমি দেখেছি দক্ষিণ কোরিয়া প্রকৃতই ভারতের সহযোগী হওয়ার ক্ষমতা রাখে। ২০১৮-য় আমাদের বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল ২১.৫ বিলিয়ন ডলার। ভারতে দক্ষিণ কোরিয়ার বিনিয়োগের পরিমাণ ৬ বিলিয়ন ডলার। ২০১৫ সালে আমার দক্ষিণ কোরিয়া সফরের পর আমরা ঐ দেশকে সহযোগিতার জন্য ‘ইনভেস্ট ইন্ডিয়া’র অধীনে “কোরিয়া প্লাস” সেল চালু করি। হুন্ডাই, স্যামসাং, এলজি ইলেক্ট্রনিক্স ভারতে এখন নির্ভরযোগ্য ব্র্যান্ড। এর মধ্যে অচিরেই যুক্ত হবে কিয়া ব্র্যান্ডটি। ভারতে দক্ষিণ কোরিয়ার ৬০০টি বাণিজ্যিক সংস্থা বিনিয়োগ করেছে। আমরা দক্ষিণ কোরিয়া থেকে আরও বেশি বিনিয়োগ আশা করি। এজন্য, দক্ষিণ কোরিয়ার নাগরিকদের জন্য ভিসা-অন-অ্যারাইভ্যালের ব্যবস্থা করা হয় ২০১৮-র অক্টোবর থেকে। বিশ্ব ব্যাঙ্কের সহজে ব্যবসা-বাণিজ্য করার যে র‍্যাঙ্কিং পদ্ধতি রয়েছে, তাতে ভারত ৬৫ ধাপ এগিয়ে ৭৭-এ উন্নীত হয়েছে। আমরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারেও যথেষ্ট উদ্যোগী হয়েছি। বিগত তিন বছরে ‘মুদ্রা’ যোজনায় আমরা ৯০ বিলিয়ন ডলার মূল্যের ক্ষুদ্র ঋণ ১২ কোটি ৮০ লক্ষ মানুষকে দিতে পেরেছি। এর মধ্যে, ৭৪ শতাংশ ঋণ দেওয়া হয়েছে মহিলাদেরকে। গ্রামীণ বৈদ্যুতিকরণের ক্ষেত্রেও আমরা যথেষ্ট উদ্যোগ নিয়েছি। ‘সাগরমালা’ প্রকল্পের অন্তর্গত কিছু বন্দর প্রকল্প চিহ্নিত করা হয়েছে যেখানে আগামী পাঁচ বছরে ১০ বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগের সুযোগ রয়েছে। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব যুগে গবেষণা এবং উদ্ভাবন গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। সাউথ কোরিয়ান ন্যাশনাল আইটি ইন্ডাস্ট্রি প্রোমোশন এজেন্সি বেঙ্গালুরুতে তাদের ভারতীয় দপ্তর খুলেছে যাতে ভারতে দক্ষিণ কোরিয়ার স্টার্ট-আপ চালু করা যায়। উদ্ভাবনের ক্ষেত্রেও দুটি দেশ ‘ইন্ডিয়া-কোরিয়া ফিউচার স্ট্র্যাটেজি গ্রুপ’ এবং ‘ইন্ডিয়া-কোরিয়া সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড ইনোভেশন কো-অপারেশন প্রতিষ্ঠার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। আমরা, আমাদের দেশের নাগরিকদের স্বপ্ন বাস্তবায়িত করার জন্য দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে একযোগে কাজ করতে আগ্রহী। দু’দেশের বাণিজ্যিক নেতৃবৃন্দ আমাদের স্বপ্ন নিজেদের মধ্যে যদি ভাগ করে না নেন, তাহলে আমাদের দু’দেশের সরকারের প্রচেষ্টার সম্পূর্ণ রূপায়ণ অসম্ভবই থেকে যাবে। আমি কোরিয়ার ভাষায় শেষ করতে চাই – অর্থাৎ, তুমি দ্রুত যাবে যদি তুমি একা যাও, কিন্তু তুমি দূরে যাবে যদি একসঙ্গে যাও। ইন্দোনেশিয়ার রাজনৈতিক, আইনগত এবং নিরাপত্তা বিষয়ক দপ্তরের সমন্বয় মন্ত্রীডঃ এইচ উইর‍্যান্টো মঙ্গলবার এখানে সাক্ষাৎ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। শ্রী মোদী বলেন, ভারত ও ইন্দোনেশিয়া পরস্পরের নৌ-প্রতিবেশী উপলক্ষে নীলঅর্থনীতির বিকাশ প্রচেষ্টায় সহযোগিতার সুযোগ ও সম্ভাবনাগুলির সদ্ব্যবহার করতেপারে। সৌদি আরবের মাননীয় শক্তি মন্ত্রী, ভারতের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রী, আন্তর্জাতিক শক্তি ফোরামের মহাসচিব, আমি আপনাদের ভারতে স্বাগত জানাই। ষোড়শ আন্তর্জাতিক শক্তি ফোরামের মন্ত্রী পর্যায়ের বৈঠকে স্বাগত জানাই। আমি এখানে এত বিরাট সংখ্যায় তেল উৎপাদক ও গ্রাহক দেশগুলির শক্তি মন্ত্রীদেরও আন্তর্জাতিক সংগঠন এবং বিভিন্ন সংস্থার সিইও-দের দেখে খুব খুশি হয়েছি। শক্তির ব্যয়ের হার ওইসিডি নয় এই ধরনের দেশগুলিতে বৃদ্ধি পেয়েছে : মধ্যপ্রাচ্য, আফ্রিকা এবং উন্নয়নশীল এশিয়া। অন্যান্য সমস্ত শক্তির উৎসের তুলনায় সৌরশক্তি অনেকটাই অর্থনৈতিক দিক থেকেসুবিধাজনক হয়ে উঠেছে। এরফলে, সরবরাহের ব্যবস্থা পরিবর্তন হচ্ছে। বিশ্বের সর্বত্র প্রাকৃতিক গ্যাসের পর্যাপ্ত প্রাপ্তিযোগ্যতা এবং এলএনজি ওপ্রাকৃতিক গ্যাসের ক্রমবর্ধমান ব্যবহার প্রাথমিক শক্তি ভাণ্ডারে অবদান যোগাচ্ছে। বৈদ্যুতিক যানবাহনের প্রচলন ব্যাপকভাবে শুরু হলে আগামী কয়েক দশকে পরিবহণক্ষেত্রেও এক বিরাট পরিবর্তন আসবে। বিশ্ব সিওপি-২১ চুক্তি অনুযায়ী জলবায়ু পরিবর্তনের বিষয়ে ব্যবস্থা গ্রহণেপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ। পরিবেশ-বান্ধব শক্তি এবং শক্তি ব্যবহারে দক্ষতার ওপর জোরআগামীদিনে অর্থনীতিগুলি শক্তি ব্যবহারে নিবিড়তা পরিবর্তন করবে। হাইড্রো কার্বন ক্ষেত্রে আমি আমার চিন্তাভাবনা আপনাদের সঙ্গে ভাগ করে নিতেচাই এবং আমাদের শক্তি নিরাপত্তা অর্জনে আমাদের উদ্যোগের কথাও আমি জানাতে চাই। বিশ্ব বহুদিন ধরে শক্তির মূল্যে অনেক ওঠা-পড়া দেখেছে। সমগ্র বিশ্বকেই যদি অর্থনৈতিক বৃদ্ধি অর্জন করতে হয়, তা হলে উৎপাদক ওগ্রাহকদের মধ্যে পারস্পরিক সমর্থন-ভিত্তিক এক সম্পর্ক গড়ে তোলা প্রয়োজন। উৎপাদকদেরস্বার্থেই অন্যান্য অর্থনীতিগুলিরও দ্রুত বৃদ্ধির প্রয়োজন। এরফলে, শক্তি বাজারেচাহিদার বৃদ্ধিও নিশ্চিত হবে। ইতিহাস আমাদের দেখিয়েছে, কৃত্রিমভাবে তেলের দাম নিয়ন্ত্রণ করা উৎপাদকদেরস্বার্থ হানিকর। তাছাড়া, উন্নয়নশীল এবং সবচেয়ে কম উন্নত দেশগুলির একেবারে নীচুতলায় এর ফলে অনর্থক সমস্যা তৈরি হয়। বিশ্বব্যাপী অনিশ্চয়তার মধ্যে ভারতেরও শক্তি নিরাপত্তার প্রয়োজন রয়েছে।ভারতের শক্তির ভবিষ্যৎ বিষয়ে আমার দৃষ্টিভঙ্গী ৪টি স্তম্ভের ওপর দাঁড়িয়ে আছে।এগুলি হ’ল – শক্তির যোগান, শক্তির দক্ষতা, শক্তির সুষমতা এবং শক্তির নিরাপত্তা। সাধারণভাবে শক্তি এবং বিশেষভাবে হাইড্রো কার্বন ভারতের ভবিষ্যতের জন্য আমারদৃষ্টিভঙ্গীতে বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ। ভারতের দরিদ্রদের জন্য নাগালের মধ্যে সুলভশক্তির প্রয়োজন। ভারতের শক্তি ব্যবহার দক্ষতারও বিশেষ প্রয়োজন। বর্তমানে ভারত বিশ্বের মধ্যে দ্রুততম বৃদ্ধির এক বৃহৎ অর্থনীতিতে পরিণতহয়েছে। আইএমএফ, বিশ্ব ব্যাঙ্ক এবং এশীয় উন্নয়ন ব্যাঙ্কের পক্ষ থেকে অদূর ভবিষ্যতেভারতের বৃদ্ধি হার ৭-৮ শতাংশে পৌঁছে যাবে বলে অনুমান করা হয়েছে। আমাদের সরকার মেক ইনইন্ডিয়ার মতো কর্মসূচির মাধ্যমে উৎপাদন এবং বস্ত্র বয়ন, পেট্রোকেমিকেল,ইঞ্জিনিয়ারিং প্রভৃতি শিল্প ক্ষেত্রে যুবকদের কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিয়েছে।এর ফলে, আবার একই সঙ্গে আমাদের শক্তির ব্যবহার অনেকটাই বেড়েছে। আমরা হাইড্রো কার্বন অনুসন্ধান এবং লাইসেন্স নীতির সূচনার মধ্য দিয়ে এইক্ষেত্রে স্বচ্ছতা এবং প্রতিযোগিতা আনার চেষ্টা করেছে। তেল উদ্ধার সংক্রান্ত বর্ধিত নীতি আপস্ট্রিম ক্ষেত্রে অত্যাধুনিক প্রযুক্তিব্যবহারকে উৎসাহিত করবে। আমাদের ডাউন স্ট্রিম ক্ষেত্রটিকে বাজারের প্রবণতা অনুযায়ীপেট্রোল ও ডিজেলের মূল্য নির্ধারণ এবং অপরিশোধিত খনিজ তেলের মূল্য পরিবর্তনের ওপরভিত্তি করে সম্পূর্ণভাবে উদার করে তোলা হয়েছে। জ্বালানির খুচরো এবং আর্থিকলেনদেনের ক্ষেত্রে আমরা ডিজিটাল মঞ্চের দিকে অগ্রসর হয়েছি। আমাদের সরকার আপস্ট্রিম তেল উৎপাদন থেকে ডাউন স্ট্রিম খুচরো ব্যবসায় তেল ওগ্যাসের মূল্য শৃঙ্খলে বেসরকারি অংশগ্রহণকে উৎসাহিত করার উদ্যোগ নিয়েছে। ২০৩০ সালের মধ্যে সবার জন্য আধুনিক শক্তির যোগান; প্যারিস চুক্তি অনুসারে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলায় জরুরি উদ্যোগ; বাতাসের গুণমান উন্নয়নে ব্যবস্থা। ভারতে উজালা যোজনার মাধ্যমে আমরা দরিদ্র পরিবারের মহিলাদের নিঃশুল্করান্নার গ্যাসের সংযোগ দিচ্ছি। প্রকৃতপক্ষে এখানে নতুন দিল্লিতে আমরা এই মাসথেকেই বিএস-৬ মানের জ্বালানি সরবরাহের ব্যবস্থা করেছি। আমাদের তেল সংস্থাগুলি শক্তি ক্ষেত্রে বৈচিত্র্য আনার কৌশল মাথায় রেখেতাঁদের বিনিয়োগের পুনর্মূল্যায়ন করছে। আন্তর্জাতিক শক্তি ফোরামের ষোড়শ সম্মেলনের মূল সুর হচ্ছে ‘বিশ্বব্যাপীশক্তি নিরাপত্তার ভবিষ্যৎ’। আমাকে জানানো হয়েছে যে, সম্মেলনের আলোচ্য সূচিতেউৎপাদক-গ্রাহক সম্পর্ক, সর্বজনীন শক্তির যোগান, সুলভতা, শক্তি ও গ্যাস ক্ষেত্রেবিনিয়োগে উৎসাহ প্রদানের মাধ্যমে শক্তির ভবিষ্যৎ চাহিদা পূরণের বিষয়গুলি রয়েছে।শক্তি নিরাপত্তা বজায় রাখা এবংব নতুন ও পুরনো প্রযুক্তির সহাবস্থান নিয়েও এখানেআলোচনা হবে। আমাদের সমষ্টিগত শক্তি নিরাপত্তার ভবিষ্যতের জন্য এগুলি বিশেষভাবেপ্রাসঙ্গিক। আমার বিশ্বাস, এই মঞ্চে এসব বিষয়ে আলোচনা বিশ্বের নাগরিকদের পরিচ্ছন্ন সুলভএবং সুষম শক্তি ব্যবহারের সুবিধা দিতে আমাদের দূর এগিয়ে দেবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আজ ভারত ও তাজিকিস্তানের মধ্যে যুব বিষয়ক সমঝোতাপত্রে কর্মপরবর্তী অনুমোদন দিয়েছে। ২০১৮ সালের ৮ই অক্টোবর দোসানবেতে ভারত ও তাজিকিস্তানের মধ্যে যুব বিষয়ক সহযোগিতায় উৎসাহ দিতে সমঝোতাপত্রটি স্বাক্ষরিত হয়। ভারতের তরফে তাজিকিস্তানে নিযুক্ত যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক ভারতীয় রাষ্ট্রদূত শ্রী সোমনাথ ঘোষ ও তাজিকিস্তানের যুব ও ক্রীড়া বিষয়ক কমিটির চেয়ারম্যান আব্দুলজোদাআহতমরুস্তম এই সমঝোতাপত্রটিতে স্বাক্ষর করেন। এই সমঝোতাপত্রের মেয়াদ হবে ৫ বছর। গত তিন বছর ধরে আমি দেশীয় ও বিদেশি বিনিয়োগকারীদের বারবার বলে আসছি যে, আমরাভারতে ‘বাণিজ্য সহজতার পরিবেশ’ উন্নয়নে আন্তরিক প্রচেষ্টা করে চলেছি| *কেননা এটা আমাদের সরকারি নীতির গুণমানের এক পরিমাপক; *কেননা এটা প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতার এক সূচক; *কেননা বাণিজ্য সহজতার পরিবেশ, জীবনের সহজতার দিকে নিয়ে যায়; *এবং সবশেষে, এটা সমাজে মানুষ কিভাবে জীবনযাপন করেন, কাজকর্ম করেন ও লেনদেনকরেন তা প্রতিফলিত করে| উদাহরণ হিসেবে বলতে হয়, বিশ্বব্যাংকের এই প্রতিবেদনে পণ্য ও পরিষেবা কর অর্থাতজি.এস.টি. রূপায়ণের বিষয়টিকে দেখা হয়নি| আপনারা সবাই জানেন, জি.এস.টি. *গত দুই বছরে আমরা ডব্লিউ.আই.পি.ও.-এর বৈশ্বিক উদ্ভাবনা সূচকে একুশ স্থানএগিয়ে এসেছি| *বিশ্বব্যাংকের লজিস্টিক দক্ষতার সূচক ২০১৬-এর হিসেবে আমরা উনিশ স্থান এগিয়েএসেছি| *ইউ.এন.সি.টি.এ.ডি.-এর তালিকা অনুসারে আমরা প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগ অর্থাতএফ.ডি.আই.-এর গন্তব্য হিসেবে এখন আমরা সবার প্রথম| নয়াদিল্লি: ৩০ আগস্ট: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার ভারত ওইজরায়েলের মধ্যে “ভারত-ইজরায়েল শিল্প গবেষণা ও উন্নয়ন এবং প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনাতহবিল (১৪এফ.)” নিয়ে মউ-এ অনুমোদন দিল| গত জুলাই মাসে (২০১৭) এই মউ স্বাক্ষরিত হয়েগেছে| মহারাষ্ট্র ও গুজরাটের রাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে ঐ দুই রাজ্যের জনসাধারণকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। গুজরাটের রাজ্য প্রতিষ্ঠা দিবস উপলক্ষে রাজ্যবাসীকে জানাই আমার অভিনন্দন। আমি জাতিকে এই মর্মেআশ্বাস দিতে চাই যে যারা এই নিন্দনীয় ঘটনার সঙ্গে যুক্ত তারা কখনই শাস্তির হাতথেকে পালিয়ে বাঁচতে পারবে না। উরি-রঘটনায় যাঁরা শহীদ হয়েছেন, আমি তাঁদের সশ্রদ্ধ অভিবাদন জানাই। জাতির প্রতি সেবারজন্য তাঁরা স্মরণীয় হয়ে থাকবেন। শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলির চিন্তাভাবনার শরিক আমিনিজেও। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী অস্ট্রেলীয় ওপেন সুপার সিরিজ খেতাব জয়ী ভারতের ব্যাডমিন্টনখেলোয়াড় কিদাম্বি শ্রীকান্ত’কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “অস্ট্রেলীয়ওপেন-এ কিদাম্বি শ্রীকান্তের জয়ে আমরা সত্যিই গর্বিত। প্রেসিডেন্ট সিরিসেনা উপস্থিত থাকবেন জাফনায় এবং ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী নয়াদিল্লি থেকে এক ভিডিও সম্মেলনের মাধ্যমে যোগ দেবেন এই অনুষ্ঠানে। জাফনার প্রাক্তন মেয়র প্রয়াত অ্যালফ্রেড থাম্বিরাজা দুরাইয়াপ্পার স্মরণে ও সম্মানে ৭ কোটি টাকারও বেশি ব্যয়ে এই স্টেডিয়ামটিকে নতুন করে গড়ে তুলেছে ভারত সরকার। নতুন করে সাজিয়ে তোলা এই স্টেডিয়ামটিতে আসন সংখ্যা বর্তমানে ১,৮৫০টি। শ্রীলঙ্কার উত্তরাঞ্চলের যুবসমাজের সার্বিক উন্নয়নে বিশেষ সহায়ক হয়ে উঠবে পুনর্গঠিত এই স্টেডিয়ামটি।সেইসঙ্গে, ঐ দেশের ক্রীড়া ও বিনোদন সংক্রান্ত কর্মসূচির প্রসার এবং পরিকাঠামো বিকাশে এক সহায়ক ভূমিকাও পালন করবে এই স্টেডিয়াম। বিগত ১৯৯৭ সাল থেকে এই স্টেডিয়ামটিতে কোন অনুষ্ঠানের আয়োজন করা সম্ভব হয়নি। শ্রী মোদী বলেন, মিঃ ট্রুডেউ কানাডার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্বভার গ্রহণ করার পর থেকে দু’দেশের সম্পর্কে এক নতুন জোয়ার এসেছে। দু’দেশের মধ্যে অর্থনৈতিক সম্পর্কের প্রসারে প্রচুর সম্ভাবনা রয়েছে বলে মনে করেন শ্রী মোদী। ভারতে ‘স্মার্ট সিটি’, নগর পরিকাঠামো এবং দক্ষতা উন্নয়নের ক্ষেত্রে কানাডা ভারতের সঙ্গে গভীর সহযোগিতার সম্পর্ক স্থাপন করতে পারে বলেও মত প্রকাশ করেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী। ভারতের প্রগতিশীল হাইড্রোকার্বননীতির কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী কয়লার উত্তোলন এবং তা থেকে গ্যাস আহরণের ক্ষেত্রে কানাডাকে সহযোগিতা প্রসারের আহ্বান জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী ভারত সফরের আমন্ত্রণ জানালে সানন্দে তা স্বীকার করে নেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী উজবেকিস্তানের স্বাধীনতা দিবসে সে দেশের মানুষকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। এক শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “উজবেকিস্তানের বন্ধু মনোভাবাপন্ন জনগণকে স্বাধীনতা দিবসের শুভেচ্ছা। ভারত সর্বদাই উজবেকিস্তানের সঙ্গে তার অটুট বন্ধনকে সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার দেবে।” তামিলনাডুর বেশ কিছু অঞ্চলে ভারী বর্ষণের ফলে বহু লোকের জীবনহানিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি শোক প্রকাশ করেছেন| তবে, যুবকদের কর্মপ্রার্থী হওয়ার পরিবর্তে কর্মদাতা হিসেবে দেখতে চান তিনি। এই লক্ষ্য পূরণে তাঁর সরকার বেশ কিছু পদক্ষেপও গ্রহণ করেছে বলে উল্লেখ করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী মুদ্রা যোজনা চালু হওয়ার পর এক বছরের কম সময়ের মধ্যেই ২ কোটি মানুষ এর আওতায় উপকৃত হয়েছেন বলে প্রসঙ্গত উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ এই অনুষ্ঠানে যাঁরা পায়ে চালানো রিক্‌শার পরিবর্তে বৈদ্যুতিন রিক্‌শা হাতে পাচ্ছেন তাঁদের ক্ষেত্রে এটি একটি নিছক পরিবর্তন মাত্র নয়, বরং, সমগ্র ব্যবস্থায় রূপান্তর ঘটানোর এটি একটি প্রক্রিয়া। নির্বাচিত প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীকী রুপে কার্ড এবং সামাজিক নিরাপত্তা প্রকল্পের কাগজপত্র তুলে দেন প্রধানমন্ত্রী। ফাইলগুলির ডিজিটাল সংস্করণ আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করার জন্য জাতীয় লেখ্যাগারে যান প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। সেখানে তিনি অধ্যাপক চিত্রা ঘোষ, শ্রী চন্দ্র বসু এবং শ্রী সূর্যকুমার বসু সহ নেতাজী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে মিলিত হন। গত বছর ১৪ অক্টোবর প্রধানমন্ত্রী তাঁর নয়াদিল্লির বাসভবনে নেতাজী পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে এক বৈঠকে ঘোষণা করেছিলেন যে, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু সম্পর্কিত গোপন ফাইলগুলি কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকে পর্যায়ক্রমে প্রকাশ করা হবে, যাতে সেগুলি জনসাধারণ প্রত্যক্ষ করতে পারেন। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণা অনুযায়ী, গত ৪ঠা ডিসেম্বর, ২০১৫ তারিখে প্রথম দফায় নেতাজী সম্পর্কিত ৩৩টি ফাইল প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে প্রকাশ করে তুলে দেওয়া হয় ভারতের জাতীয় পুরাতাত্ত্বিক সংগ্রহশালা কর্তৃপক্ষের হাতে। প্রথম পদক্ষেপ হিসেবে জাতীয় পুরাতত্ত্ব বিভাগ নেতাজী সম্পর্কিত ১০০টি ফাইল ডিজিটাল পদ্ধতিতে সংরক্ষণের মাধ্যমে সরকারি ওয়েবসাইটে প্রকাশের উদ্যোগ গ্রহণ করে। তুরস্কের রাষ্ট্রপতি শ্রী রিসেপ তায়িপ এরডোগান আজ (১১ মার্চ) প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন। রাষ্ট্রপতি এরডোগান ভারতে সাম্প্রতিক জঙ্গি আক্রমণে হতাহতদের প্রতি সমবেদনা প্রকাশ করে আহতদের দ্রুত আরোগ্য কামনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেন, বিশ্ব শান্তি ও নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সন্ত্রাস এখনও বড় বিপদ হয়ে রয়েছে। এবারের সম্মেলনে উজবেকিস্তান, রোয়ান্ডা, ডেনমার্ক, চেক প্রজাতন্ত্র ও মাল্টার রাষ্ট্রপ্রধানরা সহ বিশিষ্ট শিল্পপতি এবং দেশ-বিদেশের ৩০ হাজারেরও বেশি প্রতিনিধি অংশ নিয়েছেন। বিশ্বের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও সংস্থাগুলিকে ভারতে বিনিয়োগের আমন্ত্রণ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ভারত এখন অনুকূল বাণিজ্যিক বাতাবরণের দিক থেকে অনেক বেশি বিনিয়োগ-বান্ধব হয়ে উঠেছে, যেখানে প্রয়োজনীয় যাবতীয় পরিকাঠামো ও সুযোগ-সুবিধা রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ‘ভারত এখন বাণিজ্যিক সুবিধা প্রদানের দিক থেকে প্রস্তুত। সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ সংক্রান্ত বিশ্ব সূচকে বিগত চার বছরে ভারত ৬৫ ধাপ উন্নতি করেছে। আগামী কয়েক বছরের মধ্যে ভারতকে প্রথম ৫০-এ নিয়ে যেতে আমি আমার দলকে আরও কঠোর পরিশ্রম করতে বলেছি। শ্রী মোদী বলেন, বিশ্ব ব্যাঙ্ক, আন্তর্জাতিক অর্থ ভান্ডার ও রেটিং সংস্থা মুডিস্‌ – এর মতো আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলি ভারতের অর্থনীতি এবং সম্প্রতিকালে যে সংস্কার গ্রহণ করা হয়েছে, তাতে আস্থা প্রকাশ করেছেন। তিনি আরও বলেন, ‘ব্যবসা-বাণিজ্যকে আমরা আরও সহজ করে তুলেছি। জিএসটি সহ কর কাঠামো আরও সরলীকরণের ক্ষেত্রে অন্যান্য পদক্ষেপগুলির ফলে লেনদেন খরচ কমেছে এবং সমগ্র লেনদেন প্রক্রিয়া আরও সুদক্ষ হয়ে উঠেছে। ডিজিটাল প্রক্রিয়া এবং একক প্রয়াস গ্রহণের মাধ্যমে সহজে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুমোদন দান প্রক্রিয়াকে আমরা দ্রুততর করেছি। ভারতের বিকাশ এবং শক্তিশালী অর্থনৈতিক ভিত্তির গুরুত্বের উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে ভারতের যে কোনও সরকারের আমলের তুলনায় মোট অভ্যন্তরীণ উৎপাদন বা জিডিপি-র হার ৭.৩ শতাংশই সর্বোচ্চ। একই সঙ্গে, মুদ্রাস্ফীতির হারও ১৯৯১ সালের পর থেকে যে কোনও সরকারের আমলের তুলনায় সবচেয়ে নীচে ৪.৬ শতাংশে নেমেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নতুন নতুন স্টার্ট আপ তথা বাণিজ্যিক উদ্যোগ এবং বিশ্বমানের গবেষণার সুযোগের প্রেক্ষিতে ভারত এখন বৃহত্তম বাস্তুতন্ত্রের বিকাশ ঘটছে, যা বিনিয়োগের অনুকূল পরিস্থিতি তৈরি করছে। তিনি আরও বলেন, ‘যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করতে উৎপাদন ক্ষেত্রের বিকাশ ঘটাতে আমরা কঠিন প্রয়াস চালাচ্ছি। মেক ইন ইন্ডিয়া উদ্যোগে বিনিয়োগ বাড়াতে ভারতে ডিজিটাল ইন্ডিয়া এবং ‘স্কিল ইন্ডিয়া’র মতো কর্মসূচিগুলি যথেষ্ট সহায়ক হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ২০১৭ সালে ভারত বিশ্বের পর্যটন কেন্দ্রগুলি অন্যতম হয়ে উঠেছে। ২০১৬ সালে ভারতে পর্যটন ক্ষেত্রের ১৪ শতাংশ বিকাশ ঘটেছিল, যেখানে বিশ্বে এই হার ছিল মাত্র ৭ শতাংশ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘ভারত এইভাবে এক বিশেষ সুযোগের দেশ হয়ে উঠছে। গণতন্ত্র, জনসংখ্যা এবং চাহিদার নিরিখে এক অন্যতম দেশ হয়ে উঠেছে ভারত’। ভাইব্র্যান্ট গুজরাট শীর্ষ সম্মেলন প্রসঙ্গে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এটি একটি আন্তর্জাতিক মঞ্চ হয়ে উঠেছে, যেখানে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের নেতৃবৃন্দ যোগদান করে দেখিয়েছেন যে, আন্তর্জাতিক সহযোগিতার ক্ষেত্র শুধুমাত্র জাতীয় রাজধানীর মধ্যেই সীমিত নয়, বরং রাজ্যগুলির রাজধানীতেও সেগুলি সম্প্রসারিত হয়েছে’। গুজরাটের মুখ্যমন্ত্রী বিজয় রুপানী, নীতি-নির্দেশকারী প্রশাসন এবং দূরদর্শী নেতৃত্বের জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মঙ্গলবার এসে পৌঁছোন তেল আভিভ-এর বেন গুরিয়ন বিমানবন্দরে। শ্রী মোদীবিমানবন্দরে এসে পৌঁছনোর সঙ্গে সঙ্গেই তাঁকে সাদর সম্ভাষণ জানানো হয় ইজরায়েলেরপ্রধানমন্ত্রী মিঃ বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু-র পক্ষ থেকে। ভারতের প্রধানমন্ত্রীরসম্মানে আয়োজন করা হয় এক বর্ণাঢ্য ‘গার্ড অফ অনার’-এর। মিঃনেতানিয়াহু বলেন, ভারতের প্রধানমন্ত্রী শুধুমাত্র একজন বড় মাপের নেতাই নন, একজন‘বিশ্ব নেতা’ও। প্রত্যুত্তরে,ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইহুদি ভাষায় সম্ভাষণ জানিয়ে বলেন, ‘সালোম লেকুলাম’। তিনি ঐভাষাতেই জানান ‘ইজরায়েলে আসতে পেরে আমি আনন্দিত’। অসংখ্যইজরায়েলি শরণার্থী তথা পণবন্দীদের জীবন রক্ষার সংগ্রামে ইজরায়েলের বর্তমানপ্রধানমন্ত্রী মিঃ নেতানিয়াহুর জ্যেষ্ঠ ভ্রাতা ঠিক ৪১ বছর আগে ৪ জুলাই-এর এই বিশেষদিনটিতেই কিভাবে এন্টিবি’তে প্রাণ বিসর্জন দিয়েছিলেন, সেকথাও প্রসঙ্গত স্মরণ করেনভারতের প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদীবলেন, নিরন্তর অগ্রগতির লক্ষ্যে এবং সার্বিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় ভারত ইজরায়েল’কে একগুরুত্বপূর্ণ অংশীদার বলেই মনে করে। প্রধানমন্ত্রীর শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভার বৈঠকে শুক্রবার রাঁচির হেভি ইঞ্জিনিয়ারিং কর্পোরেশন (এইচ ই সি)লিমিটেডের ৬৭৫.৪৩ একর অব্যবহৃত জমি ঝাড়খন্ড সরকারকে হস্তান্তরের বিষয়ে অনুমোদন দিয়েছে। তিরুপতিতে এই প্রতিষ্ঠানের নতুন ক্যাম্পাস গড়ে তোলার লক্ষ্যে অন্ধ্রপ্রদেশ সরকার ইয়েরপেড়ু মন্ডলের চিন্ডেপল্লী ও পাঙ্গুর গ্রামের শ্রীনিবাসপুরমে ২৪০ একর জমি চিহ্নিত করে। বিগত ১০০বছরের জনজীবনেরইতিহাসে শ্রী আনসারির পারিবারিক ঐতিহ্যের কথা বিবৃত করেনপ্রধানমন্ত্রীতাঁর এদিনের বক্তব্যে। হাইড্রোকার্বন অনুসন্ধান সম্পর্কিত একটি প্রস্তাব আজ অনুমোদন লাভ করল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার। বাংলাদেশের মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, মন্ত্রিসভার এইঅনুমোদনের ফলে পর্যটন, বাণিজ্য এবং চিকিৎসার উদ্দেশ্যে বিদেশিরা এখানে ভারত সফরেএলে ভিসা সংক্রান্ত নতুন কিছু সুযোগ-সুবিধা লাভ করবেন। রায়বেরিলি’র এনটিপিসি প্রকল্পে দুর্ঘটনার কারণেযাঁরা প্রাণ হারিয়েছেন, তাঁদের নিকটাত্মীয়দের ২ লক্ষ টাকা করে এককালীন অর্থ সহায়তামঞ্জুর করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এইআধিকারিকরা তাঁদের যে সবচিন্তাভাবনা তুলে ধরেছেন ওযে সব পরামর্শ দিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রীতার প্রশংসা করেন। তিনিপ্রশাসনিক সক্ষমতা বৃদ্ধিও প্রক্রিয়াগত ক্ষেত্রে সততউদ্ভাবনী প্রবণতা বজায় রাখারপ্রয়োজনীয়তার ওপর গুরুত্বদেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী কেভাডিয়ায় পুলিশের ডিজিপি ও আইজিপি-দের সম্মেলনে গতকাল জাতীয় একাতার জন্য সর্দার প্যাটেল পুরস্কার ঘোষণা করেছেন। জাতীয় একতা রক্ষায় অভাবনীয় প্রয়াসের জন্য এই পুরস্কার দেওয়া হবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, “সর্দার প্যাটেল ঐক্যবদ্ধ ভারত গঠনের লক্ষ্যে তাঁর জীবন উৎসর্গ করেছেন। আস্তানায়এসসিও শীর্ষ বৈঠকের পাশাপাশি, কাজাখস্তান, চিন এবং উজবেকিস্তানের নেতৃবৃন্দেরসঙ্গে পৃথক পৃথকভাবে দ্বিপাক্ষিক বৈঠকে মিলিত হলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রীনরেন্দ্র মোদী। বৃহস্পতিবার,কাজাখস্তানের প্রেসিডেন্ট নূরসুলতান নাজারবায়েভের সঙ্গে এক বৈঠকে ২০১৭-১৮ সালেরজন্য রাষ্ট্রসঙ্ঘের নিরাপত্তা পরিষদে সদস্য পদ লাভ করায় কাজাখস্তানকে অভিনন্দিতকরেন। ঐ সফরকালে গৃহীত সিদ্ধান্ত এবং সম্পাদিত চুক্তিগুলির বাস্তবায়নের বিষয়টিপর্যালোচনা করেন দুই নেতাই। আন্তর্জাতিকসৌর সমঝোতার সদস্যপদে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে কাজাখস্তানকে আমন্ত্রণ জানান ভারতেরপ্রধানমন্ত্রী। দুটি দেশের মধ্যে সংযোগ ও যোগাযোগ আরও বাড়িয়ে তোলার গুরুত্বেরবিষয়টিও এদিন স্থান পায় দুই নেতার আলোচনার মধ্যে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ইরানের চাবাহারবন্দরের মাধ্যমে যোগাযোগ প্রসারের কথাও বলেন তাঁরা। দিল্লি ও আস্তানার মধ্যে যেখুব শীঘ্রই দুটি বিমান পরিবহণ ব্যবস্থা চালু হতে চলেছে সে প্রসঙ্গেও এদিন আলোচনাহয় তাঁদের মধ্যে। চিনেরপ্রেসিডেন্ট মিঃ জি জিনপিং-এর সঙ্গে এদিন এক আন্তরিক ও ইতিবাচক সাক্ষাৎকারে মিলিতহন শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এসসিও-তে ভারতের অন্তর্ভুক্তিকে সমর্থন জানানোর জন্য তিনিধন্যবাদ জানান মিঃ জিনপিং-কে। বাণিজ্য, বিনিয়োগ, যোগাযোগ এবং যুব ও সংস্কৃতি বিনিময়কর্মসূচি সহ বিভিন্ন বিষয় উঠে আসে দুই নেতার আলোচনাকালে। উজবেকিস্তানেরপ্রেসিডেন্ট সভকাত মির্জিওয়েভ-এর সঙ্গেও এক হৃদ্য পরিবেশে আলোচনা ও মতবিনিময় করেনভারতের প্রধানমন্ত্রী। ভারী বৃষ্টিপাতের কারণে উজ্জ্বয়িনীর কুম্ভমেলায় প্রাণহানির ঘটনায় মর্মাহত প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মেলায় সমবেত সকল সাধুসন্ত, পুণ্যার্থী ও পর্যটকদের নিরাপত্তা কামনায় প্রার্থনা করেছেন তিনি। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “প্রবল বর্ষণে কুম্ভমেলায় জীবনহানির ঘটনায় আমি মর্মাহত। শোকসন্তপ্ত পরিবারগুলিকে এই অবস্থা কাটিয়ে ওঠার মতো শক্তি দেওয়ার জন্য আমি প্রার্থনা জানাই সর্বশক্তিমানের কাছে। আহতরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠবেন বলে আমার আশা। এই প্রতিষ্ঠানের গবেষণা বৈদ্যুতিন ক্ষেত্রে সরকারের `মেক ইন ইন্ডিয়া` উদ্যোগটিকে সহায়তা করবে। এছাড়া, প্রধানমন্ত্রী সেন্টার ফর ব্রেন রিসার্চেরও শিলন্যাস করেন। শ্রী মোদীর সামনে রাষ্ট্রায়ত্ত ও.এন.জি.সি. এবং মেসার্স সুপার ওয়েভ টেকনোলজি প্রাইভেট লিমিটেডের মধ্যে সমঝোতাপত্র স্বাক্ষরিত হয়। এই সমঝোতা তেল ও প্রাকৃতিক গ্যাস খননের নতুন প্রযুক্তি গঠন সম্ভব করবে। যাঁরা বিনিময় করেছেন ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে সাইবার নিরাপত্তা সম্পর্কিত মউ শ্রী বিজয় গোখেল, সচিব (অর্থনৈতিক সংস্কার) মিঃ ইউভাল রোটেম, ডিরেক্টর জেনারেল, আর্থিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রক, ইজরায়েল সরকার তেল ও গ্যাস ক্ষেত্রে ভারতের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক এবং ইজরায়েলের শক্তি বিষয়ক সহযোগিতা মন্ত্রকের মধ্যে মউ মিঃ ড্যানিয়েল কার্মন, ভারতে নিযুক্ত ইজরায়েলের রাষ্ট্রদূত ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে বিমান পরিবহণ চুক্তির সংশোধন সম্পর্কিত প্রোটোকল বিনিময় শ্রী রাজীব নয়ন চৌবে, সচিব, অসামরিক বিমান পরিবহণ ভারত ও ইজরায়েলের মধ্যে চলচিত্র প্রযোজনা সম্পর্কিত চুক্তি শ্রী এন কে সিনহা, সচিব, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ভারতের কেন্দ্রীয় আয়ুষ মন্ত্রকের হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা গবেষণা পরিষদ এবং ইজরায়েলের হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসা গবেষণা সম্পর্কিত সেন্টার ফর ইন্টিগ্রেটিভ কম্প্রিমেন্টারি মেডিসিন, সারে জেডেক মেডিকেল সেন্টারের মধ্যে মউ বৈদ্য রাজেশ কোটেচা, সচিব, আয়ুষ মন্ত্রক ভারতের মহাকাশ বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সংস্থা (আইআইএসটি) এবং ইজরায়েলের টেগনিয়ন-ইজরায়েল ইন্সটিটিউট অফ টেকনোলজি ফর কো-অপারেশনের মধ্যে মহাকাশ ক্ষেত্রে গবেষণা সম্পর্কিত মউ ডঃ ভি কে দাধোয়াল, ডিরেক্টর আইআইএসটি ইনভেস্ট ইন্ডিয়া এবং ইনভেস্ট ইন ইজরায়েল-এর মধ্যে মউ শ্রী দীপক বাগলা, ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও ইনভেস্ট ইন্ডিয়া শ্রী সঞ্জীব সিং, চেয়ারম্যান, আইওসিএল আইওসিএল এবং ইয়েডা রিসার্চ অ্যান্ড ডেভেলপমেন্ট কোম্পানি লিমিটেডের মধ্যে নিবিড় সৌর তাপ প্রযুক্তি ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত লেটার অফ ইনটেন্ট “আমি কাশী থেকে এইসংবাদ পেলাম। বিশিষ্ট চিন্তাবিদ, লেখক ও সাংবাদিক পণ্ডিত ধর্মশীল চতুর্বেদী চলেগেলেন। দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত ভারতের প্রথম মহাকাশ শাটল ‘আরএলভি-টিডি’ উৎক্ষেপণে ইসরোর বিজ্ঞানীদের অভিনন্দিত করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। প্রধানমন্ত্রী তাঁর অভিনন্দনবার্তায় বলেছেন, “দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরী ভারতের প্রথম মহাকাশ শাটল আরএলভি টিডি-র উৎক্ষেপণ হল আমাদের বিজ্ঞানীদের শ্রম ও প্রচেষ্টার ফসল। তাঁদের আমি অভিনন্দন জানাই। স্টার্ট আপ উদ্যোগ গড়ে তোলার মূলে বাণিজ্যিক লাভটাই বড় কথা নয়, যদিও এ বিষয়টি এর সঙ্গে যুক্ত রয়েছে। স্টার্ট আপের সঙ্গে যুক্ত উদ্ভাবকরা অন্যের প্রতি সহমর্মিতা বোধ থেকেই উদ্বুদ্ধ হন এই কাজে নেমে পড়তে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশে কর্মহীন যুবকের সংখ্যা বৃদ্ধি তাঁর উদ্দেশ্য নয়, তিনি চান কর্মসংস্থানের সুযোগ বৃদ্ধি। একটি স্টার্ট আপ উদ্যোগে যদি পাঁচজনেরও কর্মসংস্থানের সুযোগ ঘটে তবে নিঃসন্দেহে তা জাতির সেবার ক্ষেত্রে একটি অবদানবিশেষ। শস্যহানি বা অপচয় এবং সাইবার নিরাপত্তা – এই দুটি বিষয়ের ওপর নজর দিতে তিনি স্টার্ট আপ শিল্পোদ্যোগী ও উদ্ভাবকদের আহ্বান জানান। স্টার্ট আপ কর্মপরিকল্পনার একটি রূপরেখাও প্রধানমন্ত্রী তুলে ধরেন তাঁর ভাষণে। স্টার্ট আপ শিল্পোদ্যোগ গড়ে তুলতে ১০ হাজার কোটি টাকার একটি তহবিল গঠনের কথাও ঘোষণা করেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী বলেন, স্টার্ট আপ শিল্পোদ্যোগ থেকে অর্জিত আয় ও লভ্যাংশের ওপর প্রথম তিন বছর আয়কর রেহাই দেওয়া হবে। এই বিলটি বিশেষভাবে পরীক্ষা করে দেখার পর সংসদের স্থায়ী কমিটি বিলটির কয়েকটি ক্ষেত্রে সংশোধনের সুপারিশ পেশ করে। বিশ্বের বৃহত্তম ওষুধ প্রস্তুতকারী দেশগুলির অন্যতম হল ভারত। বছরে ২ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি মূল্যের ওষুধ উৎপাদিত হয় এ দেশে। উৎপাদিত ওষুধের ৫০ শতাংশেরও বেশি রপ্তানি করা হয় উন্নত দেশগুলি সহ বিশ্বের ২০০টির মতো রাষ্ট্রে। এর ফলে, বিশ্বের বহু দেশে অপেক্ষাকৃত কম খরচে জনস্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয়গুলি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ভারত এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে আসছে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী মিশরে উপাসনাস্থলে জঙ্গিহানার তীব্র নিন্দা করেছেন। এইআক্রমণকে বর্বরোচিত বলে আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী নিরীহ প্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোকব্যক্ত করে সব ধরনের সন্ত্রাসের বিরুদ্ধে লড়াইতে মিশরের প্রতি ভারতের অবিচলসমর্থনের কথা জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রীবলেছেন, “মিশরে উপাসনাস্থলে বর্বরোচিত জঙ্গিহানার তীব্র নিন্দা করি। নিরীহপ্রাণহানির ঘটনায় গভীর শোক জ্ঞাপন করি। জনসাধারণের ক্ষোভ ও অভিযোগ সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় আজ খতিয়ে দেখলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এজন্য তথ্যপ্রযুক্তিভিত্তিক ‘প্রগতি’র মঞ্চটিকে ব্যবহার করেন তিনি। জন-অভিযোগ নিরসনের বিষয়টির ওপর গুরুত্ব আরোপ করে ৬০ দিনের মধ্যে এই সমস্ত অভাব-অভিযোগের নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন প্রধানমন্ত্রী। আগামী এক মাসের মধ্যে অভিযোগের বিষয়গুলি সম্পর্কে দ্রুত ব্যবস্থা নেওয়ারও কথাও বলেন তিনি। এ ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করার জন্য শীর্ষ কর্তা-ব্যক্তিদের তাঁর নির্দেশের কথা পুনরায় স্মরণ করিয়ে দেন প্রধানমন্ত্রী। ডিজিটাল ইন্ডিয়ার মাধ্যমে যে সমস্ত কর্মসূচির কাজ হাতে নেওয়া হয়েছে সে সম্পর্কেও খোঁজখবর নেন শ্রী মোদী। জমি-জমা সংক্রান্ত নথিপত্রের ডিজিটাল প্রথায় সংরক্ষণের বিষয়টি পরীক্ষা করে সমস্ত নথিপত্রকে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আধারের সঙ্গে যুক্ত করার কথা বলেন তিনি। প্রধানমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনার সফল রূপায়ণে এই বিষয়টি বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ বলে তিনি মন্তব্য করেন। ভারতীয়রিজার্ভ ব্যাঙ্কের পরামর্শ ও সুপারিশ অনুসারে তার পরিবর্তে বাজারে চালু করা হবেনতুন ৫০০ টাকা এবং ২০০০ হাজার টাকার নোট। তবে, ১০০, ৫০, ২০, ১০, ৫, ২ এবং ১ টাকারলেনদেন অব্যাহত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। মঙ্গলবারঅর্থাৎ ৮ নভেম্বর রাত্রে টেলিভিশনের পর্দায় জাতির উদ্দেশে প্রদত্ত এক ভাষণে এইগুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তগুলির কথা ঘোষণা করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী।তিনি বলেন, সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে সৎ এবং খেটে খাওয়া নাগরিকদের স্বার্থপুরোপুরি অক্ষুণ্ণ ও সুরক্ষিত থাকবে। কিন্তু, সমাজ বিরোধী এবং জাতীয়তা বিরোধীদেরহাতে মজুত ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার নোট পরিণত হবে নিছকই কাগজের টুকরোয়। প্রধানমন্ত্রীআরও বলেন যে, সরকারের এই পদক্ষেপ গ্রহণের ফলে দুর্নীতি, কালো টাকা এবং জাল ও নকলনোটের বিরুদ্ধে সংগ্রামে সাধারণ নাগরিকদের হাত আরও শক্ত হবে। আগামী কিছুদিন সাধারণনাগরিকদের কষ্ট ও অসুবিধার প্রতি সংবেদনশীল প্রধানমন্ত্রী পরিস্থিতি সহজ করে তুলতেআরও কিছু পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও ঘোষণা করেছেন। নাগরিকদের হাতেথাকা ৫০০ ও ১০০০ হাজার টাকার পুরনো নোট আগামী ১০ নভেম্বর থেকে ৩০ ডিসেম্বর পর্যন্তব্যাঙ্ক অথবা ডাকঘরে জমা দেওয়া যাবে বলেও জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তবে, আগামীঅল্প কিছুদিনের জন্য ব্যাঙ্ক ও এটিএম থেকে টাকার তোলার ব্যাপারে নির্দিষ্ট সীমাবেঁধে দেওয়া হচ্ছে। শ্রী মোদী তাঁরঘোষণায় আরও বলেন যে, মানবতার কারণে সরকারি হাসপাতাল, হাসপাতালগুলির ওষুধ বিক্রয়কেন্দ্র, রেলের বুকিং কাউন্টার, সরকারি বাস, বিমানের টিকিট সংগ্রহের কাউন্টার,রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলির পেট্রোল, ডিজেল ও গ্যাস বিক্রয় কেন্দ্র, কেন্দ্র ওরাজ্যের অনুমোদিত সমবায় ভাণ্ডার, সরকারি দুধ বিক্রয় কেন্দ্র, শ্মশান, সমাধিক্ষেত্র ইত্যাদি স্থানে ৫০০ ও ১০০০ টাকার নোট গ্রহণ করা হবে। প্রধানমন্ত্রীবিশেষ জোরের সঙ্গে ঘোষণা করেছেন যে, চেক, ডিমান্ড ড্রাফ্‌ট, ডেবিট ও ক্রেডিট কার্ডএবং ইলেক্ট্রনিক ফান্ড ট্রান্সফারের ক্ষেত্রে কোনও রকম নিয়ন্ত্রণ আরোপ করা হয়নি। বাজারে প্রচলিতপ্রচুর পরিমাণ অর্থ কিভাবে মুদ্রাস্ফীতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে এবং অসৎ উপায়ে ও অসৎউদ্দেশ্যে আর্থিক লেনদেনের ফলে মুদ্রাস্ফীতি পরিস্থিতির কিভাবে অবনতি ঘটছে, সেকথাওতাঁর ভাষণে বিবৃত করেন প্রধানমন্ত্রী। তিনি বলেন, এই ধরণের পরিস্থিতি দরিদ্র ওমধ্যবিত্ত মানুষের বিশেষ ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিশেষত, ঘরবাড়ি কেনার সময়েসাধারণ মানুষ যে ধরণের সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছেন তার উদাহরণও তিনি তুলে ধরেন তাঁরভাষণে। কালো টাকারজমানা দূর করতে সরকারি অঙ্গীকার কালো টাকা মজুতও তার লেনদেনের প্রবণতা সম্পূর্ণ বন্ধ করতে সরকার যে অঙ্গীকারবদ্ধ একথাপ্রধানমন্ত্রী বারংবার ঘোষণা করেছেন বিভিন্ন সময়ে ও বিভিন্ন উপলক্ষে। কেন্দ্রেএনডিএ সরকারের বিগত আড়াই বছরে তাঁর এই ঘোষণার পাশাপাশি কাজের দৃষ্টান্তও তিনিস্থাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রীশ্রী মোদীর নেতৃত্বে গঠিত এনডিএ সরকারের প্রথম সিদ্ধান্তই ছিল কালো টাকা বিষয়ে একবিশেষ তদন্ত দল ‘সিট’ গঠন। বিদেশিব্যাঙ্কে গচ্ছিত আমানতের ঘোষণা সম্পর্কে একটি আইন চালু করা হয় ২০১৫ সালে। এরপর,২০১৬’তে বেনামী লেনদেন বন্ধ করতে চালু করা হয় কিছু কঠোর নিয়মনীতি। ঐ একই সময়ে কালোটাকা ঘোষণা সম্পর্কে একটি কর্মসূচিও রূপায়িত হয়। কেন্দ্রীয়সরকারের এই প্রচেষ্টার সুফলও ইতিমধ্যে লক্ষ্য করা গেছে। ১ লক্ষ ২৫ হাজার কোটি কালোটাকা মজুতের ঘটনা প্রকাশ্যে নিয়ে আসা হয়েছে। আন্তর্জাতিকমঞ্চে কালো টাকার বিষয় উত্থাপন গত আড়াই বছরেরেকর্ড পরিমাণ অগ্রগতি প্রধানমন্ত্রীবলেছেন যে, সরকারি প্রচেষ্টার ফলশ্রুতিতে ভারত এক উজ্জ্বল কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠেছেবিশ্ব অর্থনীতিতে । বিশ্বের অগ্রণী অর্থ সংস্থা ওপ্রতিষ্ঠানগুলি ভারতের সমৃদ্ধির বিষয়ে এখন বিশেষভাবে আশাবাদী। প্রধানমন্ত্রী ২০১৫-র সেপ্টেম্বরে নিউইয়র্কে ‘ইউ এন জি এ’-র অধিবেশন চলাকালীন মেক্সিকোর রাষ্ট্রপতি নিয়েতো-র সঙ্গে তাঁর বৈঠকের প্রসঙ্গ স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী শক্তি, উৎপাদন শিল্প, পরিকাঠামো উন্নয়ন, নগর ও শহর পরিকল্পনা, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, মহাকাশ, কৃষি, স্বাস্থ্য ও চিরাচরিতওষুধের ক্ষেত্র সহ দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতাকে শক্তিশালী করার উপর গুরুত্ব আরোপ করেন। মেক্সিকোর বিদেশ মন্ত্রী ভারতের সঙ্গে সমস্ত ক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককে গভীরতর করতে ঐকান্তিক আগ্রহ প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সোমবার ভাচাউ-এ একটি পাম্পিং স্টেশনের উদ্বোধন করেন। এর মাধ্যমেতাপার বাঁধের জন্য নর্মদার জল ছাড়ার সুবিধা হবে। এই উপলক্ষে আয়োজিতএক জনসমাবেশে ভাষণদান কালে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে আজকের এই উদ্বোধনের ঘটনা প্রত্যেককচ্ছবাসীর কাছেই এক বিশেষ গর্বের বিষয়। জল সংরক্ষণের গুরুত্ব প্রসঙ্গে শ্রী মোদীবলেন, এই বিষয়টি সম্পর্কে কচ্ছবাসীদের খুব ভালো ধারণা রয়েছে। প্রধানমন্ত্রী আরওবলেন, গুজরাটের শাসনক্ষমতায় যাঁরাই এসেছেন তাঁরাই জোর দিয়েছেন জল সংরক্ষণের ওপর। এখননর্মদার জল এসে পড়ায় এই অঞ্চলে এক বিশেষ পরিবর্তনের সূচনা হবে। ভূজ গুজরাটেরঅন্যান্য শহরের মতোই একটি আধুনিক বাস-বন্দর পেতে চলেছে বলে ঘোষনা করেনপ্রধানমন্ত্রী। নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর গঠিত আজাদ হিন্দ সরকার গঠনের ৭৫তম বর্ষপূর্তিতে দিল্লীর লালকেল্লায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আজাদ হিন্দ সরকারের হীরক জয়ন্তীর অত্যন্ত গর্বের এই অনুষ্ঠানে দেশবাসীকে অভিনন্দন জানান প্রধানমন্ত্রী। নেতাজীর অবদানের উল্লেখ করে মোদী বলেন, সুভাষ চন্দ্র বসু দূরদর্শী ছিলেন, অত্যন্ত শক্তিশালী ঔপনিবেশিক ব্রিটিশ শক্তির বিরুদ্ধে লড়াই করার জন্য ভারতীয়দের তিনি ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, নেতাজী যে শুধুমাত্র ভারতীয়দের কাছেই এক অনুপ্রেরণার উৎস ছিলেন তাই নয়, বরং বিশ্বের বিভিন্ন দেশের স্বাধীনতাকামীদের জন্যও তিনি ছিলেন অন্যতম অনুপ্রেরণা। দক্ষিণ আফ্রিকার নেতা নেলসন ম্যান্ডেলাও নেতাজীর দ্বারাই অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী দেশবাসীকে সুভাষ চন্দ্র বসুর দেখানো পথে দেশকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কথা মনে করিয়ে দেন, নেতাজীর কাজে উদ্বুদ্ধ হয়ে দেশকে আরও উন্নয়নের দিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দেশবাসীকে আহ্বান জানান তিনি। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, বহু ত্যাগ স্বীকারের পর ভারত স্বাধীনতা অর্জন করেছে এবং সেই স্বাধীনতা রক্ষার দায়িত্ব দেশবাসীরই। জনসভায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রানি ঝাঁসি রেজিমেন্ট গঠনের মাধ্যমে মহিলা এবং সশস্ত্র বাহিনীর সমান সুযোগ-সুবিধার ভিত্তিপ্রস্তর নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুই স্থাপন করেছিলেন। অনূর্দ্ধ ২০ বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে অসমের হিমা দাস সোনা জেতায় অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, অনূর্দ্ধ ২০ বিশ্ব অ্যাথলেটিক্স চ্যাম্পিয়নশিপে ৪০০ মিটারে ঐতিহাসিক সোনা জেতায় ভারত অ্যাথলিট হিমা দাসকে নিয়ে গর্বিত এবং আনন্দিত। তাঁকে অভিনন্দন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মস্কো’তে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা কেন্দ্র ‘এমারকম’ পরিদর্শনে যান। এই কেন্দ্রে কিভাবে কাজকর্ম হয় এবং তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে বিপর্যয় মোকাবিলা সংক্রান্ত নজরদারি চালানো হয়, সে বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করা হয় এবং সাধারণ ধারণা দেওয়া হয়। এই কেন্দ্রটি কিভাবে বিপর্যয় মোকাবিলার কাজে নিযুক্ত বিভিন্ন সংস্থার মধ্যে সমন্বয়সাধন করে থাকে এ বিষয়ে তাঁকে বিস্তারিত জানানো হয়। মহাকাশ থেকে নজরদারি এবং ত্রিমাত্রিক মডেলের মাধ্যমে কিভাবে কাজ করা হয়, তাও তাঁকে বোঝানো হয়। এছাড়া, রাশিয়া এবং তার বাইরে বিভিন্ন প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে জীবন এবং সম্পত্তির সম্ভাব্য বিপদের ওপর এই কেন্দ্রটি কিভাবে নজরদারি চালায় এবং আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে বিপর্যয় মোকাবিলার জন্য সহযোগিতা করে, তাও তাঁকে বুঝিয়ে বলা হয়। প্রধানমন্ত্রী বিপর্যয় প্রতিরোধ এবং মোকাবিলা সংক্রান্ত যেসব কাজ সমন্বয়ের মাধ্যমে এবং বিশ্বব্যাপী যোগাযোগের মাধ্যমে করা হয়, সে বিষয়ে গভীর আগ্রহ প্রকাশ করেন। এই কেন্দ্রের কাজকে তিনি ‘মানবতার জন্য মহান সেবা’ বর্ণনা করেন। জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা শ্রী অজিত দোভাল, বিদেশ সচিব শ্রী এস জয়শঙ্কর, প্রতিরক্ষা সচিব শ্রী জি মোহন কুমার এবং প্রধানমন্ত্রীর প্রতিনিধিদলের অন্যান্য বরিষ্ঠ সদস্যরা এই কেন্দ্র পরিদর্শনের সময়ে তাঁর সঙ্গে ছিলেন। তাৎক্ষণিক ভিত্তিতে বিপর্যয় মোকাবিলার কাজের নজরদারি, তথ্য সংগ্রহ, বিশ্লেষণ এবং মডেলের মাধ্যমে বিপর্যয় সংক্রান্ত ভবিষ্যৎবাণী, অত্যাধুনিক প্রযুক্তি কাজে লাগিয়ে এই কেন্দ্রে করা হয়ে থাকে। মূল বক্তব্য শুরুকরার আগে দেশের বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক কয়েকটি উল্লেখযোগ্য সাফল্যের কথা আমিআপনাদের সামনে তুলে ধরতে চাই। গত মাসে আমাদেরমহাকাশ বিজ্ঞানীরা এক অভূতপূর্ব রেকর্ড সৃষ্টি করেছেন। একটিমাত্র রকেটউৎক্ষেপণের সাহায্যে তাঁরা মহাকাশে নিক্ষেপ করেছেন ১০৪টি উপগ্রহকে। এই উপগ্রহগুলিরমধ্যে আবার ১০০টি হল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ইজরায়েল, স্যুইজারল্যান্ড,নেদারল্যান্ডস, কাজাখস্থান এবং সংযুক্ত আরব আমিরশাহির। আমাদের প্রতিরক্ষাবিজ্ঞানীরাও দেশকে গর্বিত করে তুলেছেন। এই সাফল্যের জন্যআমি অভিনন্দন জানাই দেশের মহাকাশ ও প্রতিরক্ষা বিজ্ঞানীদের। আমার মনে হয়, বিশ্বযোগ উৎসবের উদ্যোগ-আয়োজনের শ্রেষ্ঠ স্থান হল হৃষীকেশ। এবং অধিকাংশক্ষেত্রেই আপনাদের এই অনুসন্ধান প্রচেষ্টা এসে শেষ হয়েছে যোগসাধনায়। যোগ হল মানুষেরজীবনে জীবন যোগ করার এক সাধনা, প্রকৃতির সঙ্গে মানুষের বন্ধন সৃষ্টির এক সোপান। এই কারণেই স্বামীবিবেকানন্দ বলেছিলেন, “প্রসারের অর্থ হল জীবন, সঙ্কোচন হল মৃত্যুর সামিল।” যোগসাধনার মাধ্যমেগড়ে ওঠে অভিন্নতার মূল সুরটি যা মন, বুদ্ধি ও মেধার অভিন্নতাকে সুপ্রতিষ্ঠিত করে। ‘অহং’ থেকে ‘আমরাবা আমাদের’ – এই বোধে আমাদের উদ্দীপ্ত করে যোগ। যোগাভ্যাস তথাযোগসাধনা একজন ব্যক্তি মানুষকে চিন্তাভাবনা, কাজকর্ম, জ্ঞান ও নিষ্ঠার দিক থেকে একউন্নততর মানুষ করে গড়ে তোলে। একথা মনে করলে ভুলহবে যে যোগ একগুচ্ছ ব্যয়াম মাত্র যা আমাদের শরীরকে সচল রাখতে সাহায্য করে। শারীরিক ব্যয়ামেরঅনেক ঊর্ধ্বে অবস্থান যোগসাধনার। আধুনিক জীবনযাত্রারটানাপোড়েন থেকে মুক্তি পেতে মানুষ প্রায়ই আশ্রয় খোঁজে তামাক, মাদক এমনকিনেশাদ্রব্যেরও। কিন্তু যোগ এমনই একসহজ সরল অথচ স্বাস্থ্যসম্মত বিকল্পের সন্ধান দিতে পারে, যা কোন নির্দিষ্ট কালেরমধ্যে গণ্ডিবদ্ধ নয়। মানসিক উদ্বেগ-উৎকন্ঠা দমনে এবং জীবনশৈলীর সঙ্গে সম্পর্কিতঅসুখ-বিসুখের নিরাময়ে যোগাভ্যাস যে নানাভাবে সাহায্য করে তার দৃষ্টান্ত রয়েছেপ্রচুর। বর্তমান বিশ্ব দুটিবিশেষ চ্যালেঞ্জের আজ সম্মুখীন – সন্ত্রাসবাদ ও জলবায়ু পরিবর্তন। এই দুটি সমস্যারসমাধানে সমগ্র বিশ্ব আজ নির্ভরশীল ভারতের ওপর, যোগসাধনার ওপর। যে সমস্তপরিবার শান্তির মধ্যে জীবনযাপন করেন, তাঁরাই গড়ে তুলতে পারেন শান্তিপূর্ণ এক সমাজব্যবস্থা। ব্যক্তি মানুষ যদি শান্তিপ্রিয় হয়, তাহলেই গড়ে উঠতে পারে এক শান্তিপূর্ণপরিবার। আর যোগ হল সেই মাধ্যম যা ব্যক্তি মানুষ, পরিবার, সমাজ, জাতি তথা সমগ্রবিশ্বকে শান্তির নিবিড় বন্ধনে আবদ্ধ করতে পারে। যখনই আমরা জলবায়ুপরিবর্তনের কথা বলে থাকি, তখনই আমরা ভোগ বা ভোগবাদ থেকে নিজেদের বিচ্ছিন্ন করেযোগসাধনার পথে চলার আগ্রহ প্রকাশ করি। যোগ হল এমনই এক কঠিনস্তম্ভ যা জীবনে শৃঙ্খলা ও বিকাশকে দৃঢ়ভাবে ধারণ করতে পারে। ব্যক্তিগত প্রাপ্তিবা লাভের কথা যখন আমরা চিন্তা করি, কোনরকম কষ্ট বা চেষ্টা ছাড়াই যখনই আমরা কোনকিছু পাওয়ার জন্য লালায়িত হই, তখনই সম্পূর্ণ পৃথক অথচ সতেজ এক পরিবেশ আমাদের খুঁজেপেতে সাহায্য করে যোগ তথা যোগসাধনা। যোগসাধনার অর্থকিন্তু বস্তুগত লাভ বা প্রাপ্তি নয়, বরং মানুষকে সংযত করে তোলার, মাত্রাতিরিক্তবাসনা থেকে মুক্ত করার একটি উপায় মাত্র। সুতরাং, কোনও কিছুলাভ বা প্রাপ্তির বাসনা নয়, বরং এই ধরণের বাসনা থেকে ‘মুক্তি’র উপায় খুঁজে পেতে যোগআমাদের সাহায্য করে। বিশ্বের এই বিশেষ প্রান্তে এই বিষয়টিকে আমরা ‘মুক্তি’ বলেইঅভিহিত করে থাকি। পরমার্থ নিকেতনেরমাধ্যমে স্বামী চিদানন্দ সরস্বতীজি এই আদর্শ নিয়ে বেঁচে থাকার পথ দেখিয়েছেন। যোগাভ্যাস তথা যোগসাধনাকে সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে পরমার্থ নিকেতনের অবদানের আমি প্রশংসাকরি। মাত্র ২৫ বছরেরও কমসময়কালে এই লক্ষ্য পূরণে সফল হয়েছেন স্বামীজি এবং তাঁর সহযোগীরা। এইকর্মপ্রচেষ্টার গভীরতা নিঃসন্দেহে বিস্ময়কর। মাত্র ১১টি খন্ডেরমধ্যে হিন্দু ধর্মের প্রায় সবকটি বৈশিষ্ট্যই তাঁরা সন্নিবেশিত করেছেন। এটি হ’ল এমনই একটিমূল্যবান গ্রন্থের সংকলন, যা থেকে উপকৃত হতে পারেন আধ্যাত্মিকতায় বিশ্বাসী যে কোনওমানুষ, যোগী পুরুষ থেকে শুরু করে অতি সাধারণ মানুষও। হিন্দুধর্মেরবিশ্বকোষের মতো আকরগ্রন্থ যখন বিভিন্ন ভাষায় অনুদিত হয়, তখন দেশে বিভিন্ন সংস্কৃতিও ঐতিহ্য সম্পর্কে সাধারণ মানুষের উপলব্ধি ও চেতনাকে তা বাড়িয়ে তোলার কাজে সাহায্যকরে। এই স্থানগুলিরচারদিকে কোনও রকম নোংরা বা আবর্জনা জমতে দেওয়া হলে তাকে অপবিত্রতারই সামিল বলেগণ্য করা হয়। এমনকি আমাদেরপ্রাচীন পুঁথিপত্রেও ব্যক্তিগত সুস্বাস্থ্যের এই গুরুত্বকে যথোচিতভাবে তুলে ধরাহয়েছে। মানুষের একটিস্বাভাবিক প্রবৃত্তি হ’ল উন্মুক্ত স্থানে আবর্জনা নিক্ষেপ করা। পাশ্চাত্যরাষ্ট্রগুলিতে কিংবা উন্নত দেশগুলিতে কিন্তু এই ধরণের পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয় না,সেখানে জনস্বাস্থ্য এবং সমষ্টিগত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা সম্পর্কে সকলের মধ্যেই একসম্যক ধারণা গড়ে উঠেছে। জলাশয়, ভূমি এবংবাতাসকে স্বাস্থ্যসম্মত রাখার জন্য সচেতনতা প্রসারের পাশাপাশি প্রচেষ্টারও গুরুত্বঅনস্বীকার্য। সুতরাং,সুস্বাস্থ্য হ’ল ব্যক্তিগত কল্যাণ তথা উন্নততর পরিবেশের লক্ষ্যে এক বিশেষ সমষ্টিগতপ্রচেষ্টা। স্বচ্ছ ভারত মিশনেরমাধ্যমে ব্যক্তি স্বাস্থ্যের সঙ্গে সমষ্টির স্বাস্থ্য যুক্ত করার উদ্যোগ নিয়েছিআমরা। আমাদের সমাজব্যবস্থায় ধর্মস্থানগুলির এক গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক ভূমিকা রয়েছে। সেগুলির অবস্থানসাধারণত বসবাসের অঞ্চলের বাইরে এক বিশাল এলাকা জুড়ে। তবে, সময় পরিবর্তনেরসাথে সাথে এই ধর্মস্থানগুলির চারপাশে গড়ে উঠেছে দোকান-বাজার ও আবাসিক কলোনি। এইকারণে, অপরিচ্ছন্ন পরিবেশ এই স্থানগুলিতে হয়ে উঠেছে এক বড় ধরণের চ্যালেঞ্জ। এই সমস্যারমোকাবিলায় স্বচ্ছ ভারত মিশনের আওতায় রূপায়িত হচ্ছে আরেকটি প্রকল্প, যার নাম দেওয়া হয়েছে‘বিশেষ বিশেষ সৌধগুলিতে স্বচ্ছতার প্রকল্প’। সুতরাং, স্বচ্ছভারত মিশন অর্থাৎ পরিচ্ছন্ন ভারতের লক্ষ্যে কর্মপ্রচেষ্টা সম্পৃক্ত দেশেরধর্মবিশ্বাস ও আধ্যাত্মিকতার মানসিকতার সঙ্গে। আমি তখন কল্পনাওকরতে পারিনি যে এত স্বতঃস্ফূর্তভাবে সকলে সমর্থন জানাবেন আমার এই প্রস্তাবকে। নজিরবিহীনভাবেবিশ্বের বিভিন্ন প্রান্তের বহু দেশই সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দিয়েছিলেন আমাদের দিকে। তারপর থেকে প্রতিবছর ২১ জুনের দিনটি সমগ্র বিশ্বে একযোগে পালিত হয় গ্রীষ্মকালীন এক বিশেষ উপলক্ষহিসেবে। আন্তর্জাতিকযোগদিবসের এই অনুষ্ঠানে এতগুলি দেশের একসঙ্গে মিলিত হওয়ার ঘটনা প্রতিফলিত করেযোগাভ্যাসের মূলমন্ত্র একাত্মতাকে। এক নতুন যুগেরঅভ্যুদয় ঘটানোর মতো সম্ভাবনাময় হ’ল যোগসাধনা, যা নিশ্চিত করতে পারে শান্তি,সৌভ্রাতৃত্ব, সহমর্মিতা এবং মানবজাতির সার্বিক অগ্রগতিকে। সুউচ্চ হিমালয়পর্বতমালার আশীর্বাদ বর্ষিত হোক আপনাদের সকলের ওপর। বহু সহস্রাব্দ ধরেআমাদের মুনি-ঋষিরা যে গঙ্গানদীর তীরে ধ্যান ও সাধনা করে গেছেন, সেখানে আয়োজিত যোগসাধনারএই বিশেষ উৎসবে আশীর্বাদ ও পূর্ণতা লাভ করুন আপনারা এই কামনা করি। আধ্যাত্মিকতার শহরঋষিকেশ এবং পরমার্থ নিকেতনের ঐশ্বরিক পরিবেশে আপনাদের অবস্থান আনন্দের হোক এইপ্রার্থনা জানাই। যোগসাধনায় উপকৃতহ’ন আপনারা সকলেই – এই প্রার্থনাও রইল আমার পক্ষ থেকে। আন্তর্জাতিক যোগউৎসবের বিশেষ সাফল্য আমি কামনা করি। ভারতও এই প্রভাব থেকে মুক্ত নয়। জল-হাওয়ার পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে কৃষকদের ঝুঁকির মাত্রাও যেমন বৃদ্ধি পেয়েছে, তেমনই তীব্রতর হয়ে উঠেছে প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের মাত্রা। আর এজন্য সমগ্র বিশ্বকেই কাজ করতে হবে দ্রুততার সঙ্গে। প্রাকৃতিক বৈচিত্র্যের মধ্যেই প্রতিফলিত হয়েছে ঐশ্বরিকতার আশীর্বাদ। আমরা বরাবরই বিশ্বাস করি যে, প্রকৃতির অস্তিত্ব মানবজাতির জন্য নয়, বরং সমগ্র মানবজাতি অস্তিত্বহীন হয়ে পড়ে প্রকৃতির আশীর্বাদ ছাড়া। প্রকৃতি আমাদের শোষণ করে না, আমাদের লালন করে। আশা ও অঙ্গীকার নিয়েই আমরা উপস্থিত হয়েছি এই শীর্ষ সম্মেলনের প্রাঙ্গণে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীকে আজ মুক্তোর তৈরি এক অভিনব শিল্প নির্দশন উপহার দেওয়া হয়। এইশিল্পকর্মটির মধ্যে রয়েছে প্রধানমন্ত্রীর প্রতিকৃতি সহ ভারতের একটি মানচিত্র। প্রধানমন্ত্রীরপ্রতিকৃতির শিল্পী শ্রীমতী খুশবু আকাশ দাভড়া জানিয়েছেন যে এই শিল্প নির্দশনটিতেখচিত রয়েছে ৫ লক্ষেরও বেশি মুক্তো। ১০ কিলোমিটার দৈর্ঘ্যের তন্তু ব্যবহার করাহয়েছে এটি তৈরি করার জন্য। ৭ ফুট বাই ৭ ফুট আকৃতির এই শিল্প নির্দশনটি সম্পূর্ণকরতে সময় লেগেছে ৮৫০ ঘন্টা। সুকমায়জঙ্গি হানায় নিহত সিআরপিএফ জওয়ানদের শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করলেন প্রধানমন্ত্রী “ছত্তিশগড়েরসুকমায় এক আক্রমণের ঘটনায় যে বীর ও সাহসী সিআরপিএফ জওয়ানরা শহীদ হয়েছেন, ভারততাঁদের শ্রদ্ধাবনত চিত্তে স্মরণ করে। ঐ বীর শহীদদের পরিবার-পরিজন ও সুহৃদদের মতোইআমিও সমান উদ্বিগ্ন। নয়া দিল্লি: ১২ সেপ্টেম্বর: প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা মঙ্গলবার ভারত ও মরক্কো ’র মধ্যেস্বাস্থ্যক্ষেত্রে সহযোগিতার জন্য সমঝোতা স্মারকে (মউ) স্বাক্ষরের জন্য অনুমোদনদিল| এই মউ-এ সহযোগিতার যেসব ক্ষেত্র রয়েছে, তার মধ্যেরয়েছে: ১)অ-সংক্রামক রোগ, যার মধ্যে রয়েছে শিশুদের হৃদরোগ ওক্যান্সার; ২)ওষুধের বিধিনিয়ম এবং ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে গুণমানেরনিয়ন্ত্রণ; ৪)জননী, শিশু ও নবজাতকের স্বাস্থ্য; ৫)ভালো অভ্যাসের বিনিময়ের জন্য হাসপাতালের মধ্যে জুটিতৈরি করা; ৬)স্বাস্থ্য পরিষেবা এবং হাসপাতালের প্রশাসন ওপরিচালনার প্রশিক্ষণ; ৭)পারস্পরিক সিদ্ধান্তের ভিত্তিতে সহযোগিতার অন্যান্যক্ষেত্র| সরকারি স্হানগুলিতে বেআইনি দখলদারদের উচ্ছেদ সম্পর্কিত ১৯৭১-এরআইনটির ২ ও ৩ নম্বর ধারার সংশোধনের একটি প্রস্তাব আজ এখানে অনুমোদিত হলপ্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রয়োজনে তাঁরা এই ধরণের ব্যক্তিদের তৎক্ষণাৎ উচ্ছেদ করারজন্য নির্দেশ-ও জারি করতে পারবেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (২৪শে জানুয়ারি) নতুন দিল্লিতে ২০১৯-এর রাষ্ট্রীয় বাল পুরস্কার বিজয়ীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। পুরস্কারজয়ী শিশুরা তাদের বিশেষ সাফল্য এবং অনুপ্রেরণাদায়ক নানা ঘটনা নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথোপকথনে অংশ নেয়। প্রধানমন্ত্রী এই পুরস্কার জয়ী শিশুদেরকে তাদের সাফল্যের জন্য অভিনন্দন জানান এবং তাদের প্রশংসা করেন। পুরস্কারজয়ী অসামান্য মেধাবী এই শিশুদের প্রকৃতির সঙ্গে নিজেদের সম্পর্ক বজায় রাখার আহ্বান জানান প্রধানমন্ত্রী। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী হালকা মেজাজে শিশুদের সঙ্গে কথা বলেন, শিশুরা তাঁর কাছে অটোগ্রাফের অনুরোধ জানায়। এ বছর বাল শক্তি পুরস্কারের জন্য মোট ৮৮৩টি আবেদন জমা পড়েছিল। কেন্দ্রীয় মহিলা ও শিশুকল্যাণ মন্ত্রক উদ্ভাবন, ক্রীড়া, শিল্প ও সংস্কৃতি, সমাজসেবা তথা সাহসিকতার ক্ষেত্রে বাল শক্তি পুরস্কারের জন্য ২৬ জনের নাম মনোনীত করে। মুম্বাইয়ের ঘাটকোপারে একটি বাড়ি ভেঙে পড়ায় যাঁরা নিহত হয়েছেন তাঁদের নিকটাত্মীয়কে এককালীন ২লক্ষ টাকা করে আর্থিক সহায়তার কথা ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। তাঁর নামে মন্দির নির্মাণ হচ্ছে শুনে প্রধানমন্ত্রীর অসন্তোষ প্রকাশ নয়াদিল্লি, ১২ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী জানান যে, তাঁর নামে মন্দির নির্মাণ করা হচ্ছে শুনে তিনি আতঙ্কবোধ করছেন। “আমার নামে মন্দির নির্মাণ হবার খবরটি দেখলাম। আমি আতঙ্কিত হয়েছি। এটি বেদনাদায়ক এবং ভারতের মহান ঐতিহ্যের বিরোধী। আমাদের সংস্কৃতি মোটেও এমন মন্দির নির্মাণ করতে শেখায় না। ব্যক্তিগতভাবে আমি খুবই দুঃখবোধ করছি। যাঁরা এটা করছেন তাঁদের বলব এমনটা না করতে। আপনাদের যদি সময় ও সম্পদ থাকে, তাহলে সেটিকে দয়া করে আমাদের পরিচ্ছন্ন ভারতের স্বপ্ন পূরণের জন্য ব্যবহার করুন”, বলেন প্রধানমন্ত্রী। এই বাজেটের জন্য আমাদের অর্থমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় অরুণ জেটলিকে আন্তরিক কৃতজ্ঞতা জানাই। গ্রাম, গরিব, কৃষক, মহিলা এবং যুবকদের এই বাজেটে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। এদের জীবনে উৎকর্ষসাধনের লক্ষ্যে এই বাজেটে বেশ কিছু পরিকল্পনা রয়েছে। এই বাজেট দারিদ্র্য দূরীকরণে সময় নির্দিষ্ট এবং ব্যাপক রূপরেখা এঁকেছে। কৃষকদের আয় দ্বিগুণ করার উদ্দেশ্যে এই বাজেটে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। গ্রামোন্নয়নে বিদ্যুৎ এবং সড়কের গুরুত্ব আমরা সকলেই জানি। এই বাজেটে ২০১৯-এর মধ্যে দেশের প্রতিটি গ্রামকে সড়ক যোগাযোগের মাধ্যমে যুক্ত করার সঙ্কল্প প্রকাশিত হয়েছে। এর মাধ্যমে দেশের গ্রামীণ অর্থ ব্যবস্থা নতুন জ্বালানি পাবে, গতিশীল হবে, সাধারণ মানুষের জীবনে অনেক বড় পরিবর্তন আসবে। সেজন্য এই বাজেটে প্রত্যেক গৃহহীনের মাথার ওপর ছাদ নিশ্চিত করাকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া, যাঁরা ভাড়া বাড়িতে থাকেন, তাদের বাড়ি ভাড়ার ওপরও আয়কর প্রদানের ঊর্ধ্বসীমা বাড়ানো হয়েছে। বছরে পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত যাঁরা আয় করেন, তাদের আয়কর ছাড়ের সীমা বাড়ানো হয়েছে। আমাদের দেশে দারিদ্র্য নিয়ে অনেক রাজনীতি হয়েছে। এক গরিব মা তাঁর সন্তানদের জন্য রান্না করতে যে উনুন জ্বালান, তার ধোঁয়া থেকে তাঁর নিজের ও সন্তানদের স্বাস্থ্যের অনেক ক্ষতি হয়। প্রায় ৪০০টি সিগারেটের ধোঁয়া থেকে যতটা ক্ষতি হয়, উনুনের ধোঁয়া থেকে প্রতিদিন তাদের শরীরে ততটাই ক্ষতি হয়। এ ধরনের হতদরিদ্র পরিবার পিছু একটি করে রান্নার গ্যাস কানেকশন দেওয়ার বরাদ্দ এই বাজেটে করা হয়েছে। ফলে, প্রায় ৫ কোটি হতদরিদ্র পরিবার উপকৃত হবে। পাশাপাশি ৫ কোটি পরিবারের জ্বালানো কাঠকয়লা প্রতিদিন কম পুড়লে সেই অনুপাতে পরিবেশ দূষণ কমবে। স্বাস্থ্যখাতে খরচও সেই অনুপাতে হ্রাস পাবে। কখনও কখনও বাড়ির কেউ জটিল কোনও রোগে আক্রান্ত হলে, তাঁর চিকিৎসার জন্য মধ্যবিত্ত, নিম্নমধ্যবিত্ত পরিবার সর্বস্বান্ত হয়ে পড়ে। সেজন্য প্রবীণ নাগরিকদের স্বার্থে বেশ কিছু পরিকল্পনা এই বাজেটে রয়েছে। বিশেষ করে, যাঁরা আমাদের দেশের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন সেই সৈনিকদের পাশে দাঁড়াতে তাঁরা যাতে অবসরগ্রহণের পর ‘এক পদ এক পেনশন’ পান তা এই বাজেটে সুনিশ্চিত করা হয়েছে। দেশের মধ্যে প্রতিরক্ষা নির্মাণ ক্ষেত্রকে সক্ষম এবং গতিশীল করে তুলতে এর আধুনিকীকরণে উল্লেখযোগ্য বাজেট বরাদ্দ করা হয়েছে। এই বাজেটে দেশের পরিকাঠামো নির্মাণে প্রায় ২ লক্ষ কোটিরও বেশি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। এই পরিকাঠামো উন্নয়নের ফলে সীমান্ত অঞ্চলে মোতায়েন দেশের অসংখ্য সৈনিক উপকৃত হবেন। ভারতের যুবশক্তি এগিয়ে চলেছে। তাদের কর্মসংস্থানের পরিসর বৃদ্ধি করতে দুটি নতুন পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে – ‘ফরম্যালাইজিং দ্য ইনফরমাল’ এবং বেকারদের কর্মসংস্থান। পাশাপাশি, ‘স্টার্ট আপ’কে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’ বাবদ অর্থ বরাদ্দ করা হয়েছে। সেই স্বপ্নকে সফল করতে একটি বিশেষ ‘আন্ত্রেপ্রেনিউরশিপ হাব’ স্থাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। দেশের যুবশক্তি যাতে সকল আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিস্পর্ধী হতে পারেন সেরকম শিক্ষাপ্রদান ও দক্ষতা উন্নয়নের ব্যবস্থা করা হয়েছে। সেজন্যে প্রয়োজনে পুরনো আইন শিথিল করতে হবে। নিদেনপক্ষে দশটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানকে আন্তর্জাতিক মানে উন্নীত করার লক্ষ্যে আমরা উচ্চশিক্ষায় উৎকর্ষে গুরুত্ব দিয়েছি। প্রতিযোগিতার পরিবেশ গড়ে তুলে আমরা দেশকে পরিবর্তনের পথে এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছি। কিন্তু পাশাপাশি প্রাথমিক শিক্ষারও সমান গুরুত্ব রয়েছে। ব্যবসায়ী এবং পেশাদারদেরও আমরা জটিলতা থেকে মুক্তি দেওয়ার চেষ্টা করেছি। কার্বন নির্গমনের দিকে লক্ষ্য রেখে আমাদের জাতীয় অঙ্গীকার গড়ে তুলতে হবে। সামঞ্জস্য বিধান এবং ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপারে আমাদের সম্পাদন করতে হবে এক সুনির্দিষ্ট চুক্তি। কিন্তু, সাফল্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে যেটা বেশি জরুরি, তা হল আমাদের জীবনশৈলীকে নিয়ন্ত্রণ করা, যাতে ভবিষ্যতে কার্বন নির্গমনের মাত্রা পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণের মধ্যে থাকে। ১৯৬টি দেশ আজ এখানে সমবেত হয়েছে।এ থেকে প্রমাণিত যে একটি সাধারণ লক্ষ্যকে সামনে রেখে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়ে উঠতে পারি। সামর্থ্য ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে আশা-আকাঙ্খা ও প্রয়োজনের সুষম এক ব্যবস্থা গড়ে তুলতে আমরা যদি আমাদের সাহস ও প্রজ্ঞাকে অবলম্বন করে সকলে মিলে এক অংশীদারিত্বের বাতাবরণ গড়ে তুলতে পারি, তা হলে সফল আমরা হবই। আমি আশাবাদী, যে নির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছে আমরা যাবই। এক বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “উপগ্রহ আই আর এন এস এস ওয়ান এফ-এর সফল উৎক্ষেপণ হল এমনই এক কৃতিত্ব, যার সম্পর্কে আমরা সকলে অত্যন্ত গর্ব অনুভব করি। মরিশাসের প্রধানমন্ত্রী পদের দায়িত্বভার গ্রহণ করায় মিঃ প্রবীন্দ কুমার জগন্নাথকে এক দূরভাষবার্তায় অভিনন্দিত করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। উত্তরে, দূরভাষমারফৎ এই অভিনন্দন বার্তার জন্য শ্রী মোদীকে ধন্যবাদ জানান মিঃ জগন্নাথ। টেলিফোনেআলাপচারিতাকালে ভারত ও মরিশাসের স্থায়ী ও শক্তিশালী সম্পর্ককে আরও জোরদার করেতোলার লক্ষ্যে অঙ্গীকারবদ্ধ হনদুই প্রধানমন্ত্রীই। এটির কাজ সম্পূর্ণ হলে সালসালাবাড়ি এবং আলিপুরদুয়ার থেকে শিলিগুড়ির দূরত্ব প্রায় ৫০ কিলোমিটার কমে যাবে। একইসঙ্গে ঐ অঞ্চলে পর্যটনেরও বিকাশ ঘটবে। এর ফলে রাজ্যের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন ত্বরান্বিত হবে এবং স্হানীয় মানুষের জন্য কর্মসংস্হানের সুযোগ তৈরি হবে। এছাড়াও, মাটি সংরক্ষণ, জল ব্যবস্থাপনা, সুসংবদ্ধ কৃষি সার ব্যবস্থাপনা, বীজ প্রযুক্তি এবং কৃষি বিপণন ক্ষেত্রেও দুটি দেশ পরস্পরের সঙ্গে সহযোগিতা করে যাবে। পশুপালন, দুধ উৎপাদন, পশুস্বাস্থ্য এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসারও এই চুক্তির অন্যতম শর্ত। কৃষি ও কৃষি প্রযুক্তি বিশেষজ্ঞদের সফরসূচি বিনিময়, তথ্যের আদানপ্রদান, বিজ্ঞানী ও প্রশিক্ষণার্থীদের বিনিময় সফর, প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, কৃষি প্রযুক্তির বিকাশ ও প্রসার সম্পর্কিত কর্মশালা ও সম্মেলনের আয়োজন ইত্যাদিও রয়েছে চুক্তির শর্তাবলীর মধ্যে। চুক্তিটি প্রাথমিকভাবে কার্যকর থাকবে পাঁচ বছরের জন্য। মেধাসম্পদেরক্ষেত্রে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা প্রসারের লক্ষ্যে এ বছর ২৩ ফেব্রুয়ারি তারিখে ভারতও কানাডার মধ্যে সম্পাদিত মউটিকে আজ কর্মপরবর্তী অনুমোদন দেওয়া হল। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার এক বৈঠকে বিস্তারিতআলোচনার পর এই অনুমোদনদানের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়। ভারত ও কানাডা দুটি দেশেইউদ্ভাবন প্রচেষ্টা, সৃজনশীলতা এবং অর্থনৈতিক অগ্রগতির প্রসারকেসমর্থন জানানোই এইমউ সম্পাদনের উদ্দেশ্য। বিশ্ব অর্থ ব্যবস্থায় ব্যাপক আর্থিক ঝুঁকি এবং অস্তিরতার দরুণ সার্ক সদস্য দেশগুলির স্বল্পমেয়াদী বিনিময় চাহিদা পূর্ববর্তী সহমতের তুলনায় বেশি হতে পারে। ওড়িশা ও পাঞ্জাবের সড়ক প্রকল্পগুলি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির বৈঠকে অনুমোদন লাভ করায় ঐ দুই রাজ্যের যোগাযোগ ও পরিকাঠামো আরও উন্নত হয়ে উঠবে বলে মনে করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই বিষয়টি সম্পর্কে ট্যুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন : “পাঞ্জাবের ৩৪৪এ জাতীয় মহাসড়কের ফাগোয়াড়া-রূপনগর সেকশনটিকে চার লেনের রাস্তায় রূপান্তরের প্রস্তাব অনুমোদন করেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটি। এই প্রকল্প রূপায়ণে ব্যয় ধরা হয়েছে ১,৪৪৪ কোটি ৪২ লক্ষ টাকা এবং প্রায় ৮০.৮২০ কিলোমিটার দীর্ঘ রাস্তা এর ফলে আরও উন্নত হয়ে উঠবে। ওড়িশার ৪২ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের (নতুন ৫৫ নম্বর মহাসড়ক) আংগুল-সম্বলপুর সেকশনটিকে চার লেনের রাস্তায় উন্নীত করার প্রস্তাবেও অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটি। মহারাষ্ট্রের ২১১ নম্বর জাতীয় মহাসড়কের ঔরঙ্গাবাদ-তেলওয়াড়ি সেকশনটিকে চার লেনের রাস্তায় রূপান্তরের প্রস্তাবটিও অনুমোদন লাভ করেছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত কমিটির। প্রায় ৮৭ কিলোমিটার দীর্ঘ এই সড়কটিকে উন্নত করে তুলতে ব্যয় ধরা হয়েছে ২,০২৮ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন দিল্লি থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পাঁচটি স্মার্ট শহরের জন্য ইন্টিগ্রেটেড কমান্ড ও কন্ট্রোল সেন্টারের শিলান্যাস করেন। এইউপলক্ষে উধমপুরে আয়োজিত এক জনসমাবেশে শ্রী মোদী বলেন, এই সুড়ঙ্গ সড়কটি শুধুমাত্রবিশ্বমানেরই নয়, এযাবৎকালের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ। পরিবেশ-বান্ধব এই সুড়ঙ্গ বিশ্বউষ্ণায়নের মোকাবিলায় এক বিশেষ কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলেই মনে করেন তিনি । প্রধানমন্ত্রীবলেন, একদিকে যখন কিছু বিপথগামী যুবক ধ্বংস ও নাশকতার কাজে পাথর হাতে তুলে নিয়েছে,অন্যদিকে তেমনই কাশ্মীরের আরও বেশ কিছু যুবক পাথর কেটে তৈরি করছেন নতুন নতুনপরিকাঠামো। এই সুড়ঙ্গ পথ শুধুমাত্র পর্যটনেরই প্রসার ঘটাবে না, সাহায্য করবেরাজ্যের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতেও। হিংসাও সন্ত্রাস কখনই মানুষকে সাহায্য করে না – একথার ওপর জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন,জম্মু ও কাশ্মীরের উন্নয়নে কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষিত প্যাকেজ অনুযায়ী রাজ্যে বিভিন্নকর্মপ্রচেষ্টার ইতিমধ্যেই সূচনা হয়েছে। এজন্য তিনি বিশেষভাবে ধন্যবাদ জানানরাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী শ্রীমতী মেহবুবা মুফতিকে। ২০১৮-র এশিয়ান গেমস-এ অসাধারণ সাফল্যের জন্য ভারতীয় প্রতিযোগীদের অভিনন্দন জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় শ্রী মোদী বলেছেন, এশিয়ান গেমস শেষ হওয়া মুখে। এশিয়ান গেমস-এর ইতিহাসে ২০১৮-র গেমস ভারতের পক্ষে অনুকূল ছিল। প্রধানমন্ত্রী একইসঙ্গে প্রতিযোগীদের শিক্ষক বা কোচ, সহায়ক কর্মী, বাবা-মা, পরিবার এবং বন্ধুদের কুর্নিশ জানিয়েছেন। ধন্যবাদ জানিয়েছেন ক্রমাগত সফল প্রতিযোগীদের সমর্থন করার জন্য। তিনি অ্যাথলিটদের ভবিষ্যৎ উদ্যোগেরও সাফল্য কামনা করেছেন একইসঙ্গে। পাশাপাশি, ইন্দোনেশিয়ার প্রেসিডেন্ট জোকো উইডোডো এবং সেদেশের জনগণকেও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী অসাধারণ একটি গেসম-এর আয়োজন করার জন্য। অবিচার এবং উৎপীড়ণের বিরুদ্ধে তিনি লড়ে গিয়েছেন। ধর্ম, জাতপাতের অনুশাসনকে ভেঙে এগিয়ে যাওয়াই তাঁর লক্ষ্য ছিল, বলে মতপ্রকাশ করেন শ্রী মোদী। তিনি আরও বলেন, গুরু গোবিন্দ সিং-জীর প্রেম, শান্তি এবং আত্মত্যাগের বার্তা আজও প্রাসঙ্গিক। শ্রী মোদী বলেন, আগামী বছরগুলিতে গুরু গোবিন্দ সিং-জীর মূল্যবোধ এবং উপদেশ আমাদের উদ্বুদ্ধ করবে। তাঁর বক্তব্য অনুযায়ী, গুরু গোবিন্দ সিং-জীকে সম্মান জানানোর একটি ছোট প্রচেষ্টা স্মারক মুদ্রা প্রকাশ। গুরু গোবিন্দ সিং-জী যে ১১ দফা পথের সন্ধান দিয়েছেন সেটিকে অবলম্বন করে এগোনোর পরামর্শ-ও দেন প্রধানমন্ত্রী। শ্রী মোদী এর পাশাপাশি, লোহরি উপলক্ষ্যে দেশবাসীকে শুভেচ্ছা জানান। প্রসঙ্গত, ২০১৮-র ৩০ ডিসেম্বর মাসিক রেডিও অনুষ্ঠান ‘মন কি বাত’-এ প্রধানমন্ত্রী শ্রী গুরু গোবিন্দ সিং-জীর আত্মত্যাগ ও ভক্তি অবলম্বন করে চলার আহ্বান জানান। ২০১৭-র ৫ জানুয়ারি পাটনায় গুরু গোবিন্দ সিং-জীর ৩৫০-৩ম জন্মবার্ষিকী উদযাপন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী উপস্হিত-ও ছিলেন। অধিনায়কমিতালী রাজ রয়েছেন মহিলা ক্রিকেট দলের নেতৃত্বের পুরোভাগে। খেলার সময় তিনি যেরকমস্থির মস্তিষ্কে সবকিছু পরিচালনা করেন, তাতে সমগ্র দল নিশ্চিতভাবেই লাভবান হবে। মহিলাদেরবিশ্বকাপ ফাইনালে পুনম রাউতকে শুভেচ্ছা জানায় গোটা ভারত। তাঁর খেলা আমাদের গর্বিতকরে। হরমনপ্রীতকাউরের গুণগ্রাহী নয় এমন মানুষ খুঁজে পাওয়া ভার। সেমিফাইনালে তিনি যেভাবে খেলেছেন,তা সকলেরই মনে থাকবে। তাই তাঁকেও জানাই শুভেচ্ছা। ফাইনালেসৌভাগ্য কামনা করি দীপ্তি শর্মারও। সমগ্র দলের পক্ষে তিনি যথেষ্ট মূল্যবান এবংতাঁর খেলা বহু ম্যাচের ভাগ্যই বদলে দিয়েছে। মিড্‌লঅর্ডারে যা প্রয়োজন তা হল ধৈর্য্য ও স্থিরতা যা আমরা আশা করি বেদা কৃষ্ণমূর্তিরঅভিজ্ঞতা থেকে। তাঁকেও আজকের খেলায় শুভেচ্ছা জানাই। উইকেট রক্ষকহিসেবে সুষমা ভার্মার এক গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রয়েছে। ঝুলনকেও জানাই আমাদের শুভেচ্ছা। শিখাপাণ্ডের সার্বিক সাফল্য সমগ্র দলের পক্ষেই খুব গুরুত্বপূর্ণ। শুভেচ্ছা জানাই পুনম যাদবকেও। রাজেশ্বরীগায়কোয়াড় বিখ্যাত স্থির নিশানায় মেপে বল করার জন্য। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২৮ ও ২৯ জুলাই লক্ষ্ণৌ সফরে যাবেন। ২৮ জুলাই তিনি ‘পুর এলাকার রূপান্তর’ শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন। পুর উন্নয়ন সংক্রান্ত কেন্দ্রীয় সরকারের তিনটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগের তৃতীয় বার্ষিকী উপলক্ষে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হবে। এগুলি হ’ল – প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (পুর), পুর অঞ্চলের রূপান্তর ও পুনরুজ্জীবনের জন্য অটল মিশন (অম্রুত) এবং স্মার্ট সিটি মিশন। প্রধানমন্ত্রী পুর উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের ফ্ল্যাগশিপ মিশনগুলি বিষয়ে একটি প্রদর্শনীও পরিদর্শন করবেন। তিনি ৩৫টি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল থেকে একজন করে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা প্রাপকের সঙ্গে আলোচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী ভিডিও লিঙ্কের মাধ্যমে উত্তর প্রদেশের বিভিন্ন শহরের প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার সুবিধা প্রাপকদের কাছ থেকে তাঁদের বক্তব্য জানবেন। বিনিয়োগ আকর্ষণ ও শিল্পায়ন প্রক্রিয়াকে তুলে ধরার লক্ষ্যে ২০১৮ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে উত্তর প্রদেশ সরকার বিনিয়োগকারীদের এক সমাবেশের আয়োজন করেছিল। এরফলে, পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি, পরিকাঠামো, বিদ্যুৎ, তথ্য প্রযুক্তি এবং ইলেক্ট্রনিক দ্রব্য উৎপাদন ও পর্যটন ক্ষেত্রে ৪.২৮ লক্ষ কোটি টাকারও বেশি লগ্নির প্রস্তাব এসেছে। কয়েক মাসের মধ্যেই ৮১টি প্রকল্পের প্রায় ৬০ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ বাস্তবায়নের ক্ষেত্র প্রস্তুত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ মণিপুরে ৭৫০ কোটি টাকার বিভিন্ন ধরনের উন্নয়নমূলক প্রকল্পেরসূচনা করেছেন। তিনি জাতীয় ক্রীড়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন।এছাড়া, এক হাজারটি অঙ্গনওয়াড়ি কেন্দ্র এবং আরও বেশ কয়েকটি গুরুত্বপূর্ণ উন্নয়নমূলকপ্রকল্পেরও সূচনা করেছেন। তিনি রানী গাইদিঁলু পার্কে লুয়াংপোকপা মাল্টি স্পোর্টসকমপ্লেক্সের এবং আরও কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের উদ্বোধন করেন। তিনি লুয়াংসাংবাম-এএকটি জনসভাতেও ভাষণ দেন। অত্যন্তউৎসাহী মানুষের এই সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে গত এক বছর ধরে যে সবউন্নয়নমূলক কাজকর্ম হয়েছে তার জন্য রাজ্য সরকারের প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, আজযে সমস্ত প্রকল্পের সূচনা হয়েছে, তার সঙ্গে এ রাজ্যের প্রতিভাবান যুবকদেরআশা-আকাঙ্ক্ষা, তাঁদের কর্মসংস্থান, মহিলা ক্ষমতায়ন এবং যোগাযোগ পরিকাঠামোউন্নয়নের সঙ্গে যুক্ত। সম্প্রতি শেষ হওয়া ‘খেলোইন্ডিয়া’ গেম্‌স-এ অসাধারণ ক্রীড়া নৈপুণ্য প্রদর্শনের জন্য তিনি মণিপুরের যুবকদেরপ্রশংসা করেন। তিনি বলেন, মাল্টি স্পোর্টস কমপ্লেক্স এইসব যুবকদের খেলাধূলারপ্রশিক্ষণ এবং প্রতিযোগিতার সুযোগ এনে দেবে। প্রধানমন্ত্রীবলেন, খেলাধূলার মাধ্যমে মহিলাদের ক্ষমতায়নের এক পথ দেখিয়েছে মণিপুর। তিনি মীরাবাঈচানু এবং সরিতা দেবীর মতো রাজ্যের বিখ্যাত ক্রীড়া ব্যক্তিত্বদের প্রশংসা করেন। রাজ্যসরকারের উদ্যোগে মহিলাদের ক্ষমতায়নের জন্য অন্যান্য যে সব পদক্ষেপ রাজ্য সরকারনিয়েছে তিনি তারও প্রশংসা করেন। এ প্রসঙ্গে তিনি এক হাজারটি নতুন অঙ্গনওয়াড়িকেন্দ্রের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপনের কথাও উল্লেখ করেন। এছাড়া, সম্প্রতি সূচনা হওয়াজাতীয় পুষ্টি মিশনের কথাও তিনি উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চলের জন্য সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি হচ্ছে ‘পরিবহণের মাধ্যমেরূপান্তর’। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, উত্তর-পূর্বাঞ্চল ভারতের অর্থনৈতিক বৃদ্ধিরনতুন ‘ইঞ্জিন’ হিসাবে উঠে আসতে পারে। সরকার দেশের অন্যান্য অঞ্চলের সঙ্গেঅর্থনৈতিক বৃদ্ধির ক্ষেত্রে উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলির সামঞ্জস্য বিধানেরলক্ষ্যে বিশেষ ব্যবস্থা নিচ্ছে বলে তিনি জানান। শ্রী মোদী বলেন, গত চার বছরে তিনি ২৫বারেরও বেশি উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলি সফর করেছেন। প্রধানমন্ত্রীবলেন, কেন্দ্রীয় সরকার এই অঞ্চলের পরিকাঠামো উন্নয়নে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছে। সড়কএবং রেল যোগাযোগ স্থাপনে সরকার গৃহীত বিভিন্ন উদ্যোগের কথা তিনি তুলে ধরেন। শ্রীমোদী রাজ্য সরকারের নাগরিক-কেন্দ্রিক বিভিন্ন ধরনের উদ্যোগের প্রশংসা করে বলেন, এরমাধ্যমে সুন্দরভাবে জন-অভিযোগের নিষ্পত্তি করা সম্ভব। প্রধানমন্ত্রীস্মৃতিচারণ করে বলেন, ১৯৪৪ সালের এপ্রিল মাসে নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর আজাদ হিন্দবাহিনী স্বাধীনতার উদাত্ত আহ্বান জানিয়েছিল। গুণ্ডামী ও লুঠতরাজের সাম্প্রতিক ঘটনাগুলির দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের গ্রেপ্তার করতে প্রধানমন্ত্রী পুলিশ কমিশনারকে নির্দেশ দেন। তিনি গুণ্ডামী ও লুঠতরাজের ক্রমবর্ধমান ঘটনাগুলিতে বিশেষ নজর দিয়ে রাজধানীতে মহিলাদের সুরক্ষা ও নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করার লক্ষ্যে স্বরাষ্ট্র সচিবকে কাজ করার নির্দেশ দিয়েছেন। এজন্য প্রয়োজনীয় খরচ বর্তমান বাজেট ও আয়ুষ মন্ত্রকের প্রকল্প থেকে মেটানো হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা জলবিদ্যুৎ ক্ষেত্রে উৎসাহদানে বিশেষ অনুমোদন দিল। এরমধ্যে নন সোলার রিনিউএবেল পারচেস অবলিগেশন (আরপিও)-এর অঙ্গ হিসেবে বৃহৎ জলবিদ্যুৎ প্রকল্প রয়েছে। একইসঙ্গে পর্যটন ও ছোট ব্যবসায় অপ্রত্যক্ষ কর্মসংস্হানের সুযোগ তৈরি হবে। নয়া দিল্লি: ২১ নভেম্বর: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি আন্তর্জাতিক বিচারালয়েপুনর্নির্বাচিত হওয়ার জন্য বিচারপতি দলবীর ভান্ডারীকে অভিনন্দন জানালেন| আপনাদের প্রত্যেককেই আমার ধন্যবাদ! তরুণ ও বিশিষ্ট প্রদর্শকদের সকলকেই আমার সাদর অভিনন্দন। রবিবারের সকালে সকলে একসঙ্গে উপস্থিত থাকার জন্য আপনাদের ধন্যবাদ জানাই। রিড হফ্ম্যান, আপনার লিঙ্কডইন একটি দারুন জিনিস। এখানে এমনকি ভারতেও অনেকের কাছে আপনি এক অনুপ্রেরণা। মোহন, ভেঙ্কি, অ্যাম্বাসাডার আপনাদের সকলকে ধন্যবাদ। আজ এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। আমার কাছে এটি একটি বিশেষ উপলক্ষ, কারণ ‘স্টার্টআপ’ বিষয়টির সঙ্গে আমি একাত্মতা বোধ করছি। মানব ইতিহাস ও অগ্রগতিকে আকার, রূপ ও অবয়ব দিয়েছে কল্পনা, অনুপ্রেরণা, আবিষ্কার ও উদ্ভাবন। খুব ঝোড়ো বাতাস বইলে কেউ কেউ হয়তো জানলাটাকে বন্ধ করে দিতে চাইবে। কিন্তু, এমন অনেকে আছেন, যাঁরা তখন একটি উইন্ডমিল তৈরি করে ফেলবেন কিংবা সমুদ্রে ভাসিয়ে দেবেন তাঁদের পালতোলা নৌ-যান। অগ্রগতির চালিকাশক্তিই হল ‘স্টার্টআপ’। যে সমস্ত বড় বড় প্রতিষ্ঠান আজ গড়ে উঠেছে তার মূলে ছিল কিন্তু বিগত দিনের ‘স্টার্টআপ’। পার্থক্য শুধু এটুকুই যে ‘স্টার্টআপ’-এর এক নতুন উর্বর ক্ষেত্র ও পরিবেশ সম্ভব করে তুলেছে আজকের ডিজিটাল যুগ। আমরা এমনই এক বিশ্বে বাস করছি যা সম্পদ আহরণের মধ্য দিয়ে গড়ে ওঠেনি, গড়ে উঠেছে ধারণার প্রচার ও প্রসারের মধ্য দিয়ে। সৃষ্টিকর্তা নয়, গ্রাহকই সেই ধারণা ও প্রয়োগের আবিষ্কারক। আজকের দিনে বিকাশের স্বাভাবিক গতি বা হারকে তুচ্ছ করে দিয়েছে ‘স্টার্টআপ’। মাত্র এক বছরের মধ্যেই একটি ধারণা বা মতবাদ ছড়িয়ে পড়তে পারে সারা বিশ্বে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে প্রযুক্তি ও সংহতির সহাবস্থান এনে দিয়েছে স্থাপনা শক্তি এবং এই ধারণা ও মতের সমর্থক মানুষ উদ্যম ও উদ্যোগের ক্ষেত্রে উন্মুক্ত করে দিয়েছে এক নতুন বিশ্বের দ্বার। পরিবেশগত অবস্থা ও ব্যবস্থা গড়ে উঠেছে সিলিকন ভ্যালিতে। ক্যালিফোর্নিয়ার উপকূলে এখানে যেভাবে গড়ে তোলা হয়েছে বর্তমান বিশ্বকে তা সম্ভব করে তুলতে পারেনি আর কেউ। বড় বড় কোনও নাম নয়, ব্যক্তি নয়, কিন্তু ছোট ছোট সংস্থা – তারাই প্রতিদিন মানব জীবনকে শিল্প ও সৃষ্টিশীলতার আনন্দের মধ্য দিয়ে সমৃদ্ধ করে তোলার নতুন নতুন উপায় উদ্ভাবন করে চলেছে। আমেরিকার সাফল্যের মূল বিষয় হল এটিই, যা সমগ্র বিশ্বকে অনুপ্রাণিত করেছে। তাই, ‘স্টার্টআপ’ প্রযুক্তি ও উদ্ভাবনকে আমি ভারতের রূপান্তর এবং যুব শক্তির কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টির একটি কার্যকর হাতিয়ার বলেই মনে করি। আমাদের দেশে ৩৫ বছরের কম বয়সী ৮০ কোটি তরুণ ও যুব শক্তি রয়েছে। যখন ভারতের ৫০০ শহরের প্রত্যেকটিতে শুরু হবে ১০টি করে ‘স্টার্টআপ’ এবং ৬ লক্ষ গ্রামের প্রত্যেকটিতে নিয়মিতভাবে গড়ে উঠবে ৬টি করে ক্ষুদ্র বাণিজ্যিক সংস্থা, তখন আমরা এক বিশাল অর্থনৈতিক অগ্রগতির দিকে এগিয়ে যাবো এবং তখনই সৃষ্টি হবে বিরাট সংখ্যক কর্মসংস্থানের সুযোগ। ভারতে ‘স্টার্টআপ’-এর উপযোগী পরিবেশ দ্রুত গড়ে উঠছে। দেশের যুবসমাজের উৎসাহ, উদ্যম এবং উদ্ভাবনী শক্তি এই পরিবেশ গড়ে তুলছে। দেশের প্রতিটি ক্ষেত্রে নতুন নতুন সুযোগ ও দ্রুত অগ্রগতির সঙ্গে বেড়ে উঠছে এক বিশাল বিপণন সম্ভাবনা। নতুন নতুন উদ্যোগ গ্রহণের জন্য আমাদের রয়েছে আগ্রহ, সুযোগ-সুবিধা ও প্রাতিষ্ঠানিক ব্যবস্থা। একটি ধারণা ও মতবাদকে আশ্রয় করে তা লালন করা, তার মধ্যে গতিসঞ্চার করা এবং বিনিয়োগের মাধ্যমে ঝুঁকি গ্রহণ করার মতো শক্তি আমাদের রয়েছে। বিরাট উৎসাহ ও উদ্দীপনার মধ্য দিয়ে ‘স্টার্টআপ’ শুরু করার কাজে ভারত এখন প্রস্তুত। বিগত কয়েক বছর ধরে এই উৎসাহ উদ্দীপনা একটু একটু করে শুরু হয়েছে। এখানে এমন অনেকে ‘স্টার্টআপ’-এর সঙ্গে যুক্ত আছেন, যাঁদের মূল বা শিকড় ভারতে। শিক্ষা, স্বাস্থ্য পরিচর্যা, কৃষি, বিশুদ্ধ জ্বালানি, নিরাপত্তা, দরিদ্র সাধারণের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি এবং নির্মল জল সুলভ করে তুলতে তাঁরা প্রযুক্তি প্রয়োগের কাজে ব্যস্ত রয়েছেন। আমাদের ‘স্টার্টআপ’ শুধুমাত্র বাণিজ্যিক সাফল্যেরই সূচক নয়, বরং সামাজিক উদ্ভাবনের তা এক বলিষ্ঠ উদাহরণ। ভারতবাসী যে গতিতে ডিজিটাল প্রযুক্তিকে গ্রহণ করেছে তা যে কোনও মানুষের শিক্ষা, ভাষা, বয়স ও উপার্জনকে বাধা বলে মানে না। উন্নয়নের প্রচলিত পথ বা চিরাচরিত ধারাতে আমাদের এখন সন্তুষ্ট থাকলে চলবে না। আমাদের এই দর্শনকে সফল করে তুলতে ‘স্টার্টআপ’-এর রয়েছে এক বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা। পরিকাঠামো নির্মাণ থেকে পরিষেবার প্রসার, পণ্য উৎপাদন থেকে মানবসম্পদের বিকাশ, সরকারকে সাহায্য করার পাশাপাশি নাগরিকদের দক্ষতা বাড়ানো এবং ডিজিটাল সাক্ষরতার প্রসারে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার রয়েছে এক বিশাল সাইবার জগৎ, যা সকলের সামনে অফুরন্ত সুযোগের দ্বার উন্মুক্ত করে দিতে পারে। তাই, ‘স্টার্টআপ’কে আমি কোনও স্বল্পকালীন বিনিয়োগ নয় বরং দীর্ঘমেয়াদী প্রতিশ্রুতি হিসেবেই দেখতে চাই। আমাদের প্রয়োগ ও উদ্যমের সীমানা বলে যদি কিছু থাকে, তা হল আমাদের কল্পনাশক্তি। আমাদের রয়েছে মহাকাশ দপ্তর, যার পোর্টালে তথ্য ও পরিসংখ্যান সকলের জন্য উন্মুক্ত। গত কয়েক মাসে সরকার পরিচালনা তথা শাসন ব্যবস্থা ও উন্নয়নের কাজে আমরা ১৭০টির মতো প্রয়োগকে কাজে লাগিয়েছি। এর অনেকগুলিই ভারতে নতুন নতুন উদ্যোগের চালিকাশক্তি হয়ে উঠতে পারে। ডিজিটাল দিক থেকে শুধুমাত্র সুযোগ সৃষ্টি কিংবা শহরাঞ্চলের সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলির মাধ্যমে বিজ্ঞানের অগ্রগতির মধ্যেই তা সীমাবদ্ধ নয়। আমি দেখতে চাই, ‘স্টার্টআপ’-এর যে শক্তি ও ধারণা, তা যেন দেশের অর্থনীতিকে উজ্জ্বলতর করে তোলে এবং গ্রাম ভারতের সাধারণ মানুষের ভাগ্যও যাতে তার সাহায্যে আলোকিত হয়। হস্তশিল্প থেকে পর্যটন – সম্ভাবনার শেষ প্রান্ত এবং ভারতে তার সুফলের প্রান্তসীমা সুদূর প্রসারিত। তাঁরা শুধুমাত্র গ্রামীণ অর্থনীতিকেই বদলে দিতে পারেন না, তাঁরা বদলে দিতে পারেন আমাদের সমাজকেও। আমাদের উন্নয়নের মডেলে সরকারি ক্ষেত্র ও বেসরকারি ক্ষেত্রের কথাই শুধু বলা হয়। আর ঠিক এই কারণেই এ বছর স্বাধীনতা দিবসের ভাষণে আমি ‘স্টার্টআপ’ ইন্ডিয়ার ওপর বিশেষ গুরুত্ব আরোপ করেছিলাম। আমরা আমাদের কর্মসূচি চালু করেছি আমাদের মিশনকে সফল করে তোলার লক্ষ্যে। আমি আপনাদের আশ্বাস দিয়ে বলতে পারি যে, সরকারি দীর্ঘসূত্রিতায় আপনাদের সৃষ্টিশীলতার গতি কখনই রুদ্ধ হবে না। আমাদের একটি মিশন হল – ‘অটল উদ্ভাবন মিশন’, যা আমাদের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর নামানুসারে উদ্ভাবনের লক্ষ্যে চিহ্নিত। নক্শা উদ্ভাবন, উন্নয়ন এবং নতুন নতুন পণ্যের উৎপাদনের লক্ষ্যে বৈদ্যুতিন উন্নয়ন তহবিলও আমরা গঠন করছি। আমাদের নিয়ম-কানুন ও প্রক্রিয়াতেও আমরা পরিবর্তন আনছি, যাতে ভারতে বাণিজ্যিক কাজকর্ম শুরু করা এবং তা চালিয়ে যাওয়া আরও সুবিধাজনক হয়ে ওঠে। আমাদের ডিজিটাল পরিকাঠামো ও পরিষেবাকে সকলের কাছে সুলভ ও সকলের জন্য উন্মুক্ত করে তুলতে চাইছি, যাতে তার সাহায্যে দেশের ৬ লক্ষ গ্রামে ব্রডব্যান্ড, বিশ্ববিদ্যালয় সহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে এবং সর্বসাধারণের জন্য উন্মুক্ত স্থানে বিনামূল্যে ওয়াইফাই-এর সুযোগ পৌঁছে দেওয়া যায়। একইসঙ্গে আমরা তথ্যের নিরাপত্তা ও গোপনীয়তা, মেধাসম্পদ অধিকার এবং সাইবার নিরাপত্তার মতো বিষয়গুলির ওপরও গুরুত্ব আরোপ করছি। সুতরাং, ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’, ‘স্কিল ইন্ডিয়া’ এবং ‘ডিজাইন ইন্ডিয়া’ অনন্ত সুযোগ ও সম্ভাবনার দ্বার উন্মুক্ত করে দিতে চলেছে। সুতরাং বন্ধুগণ, ‘স্টার্টআপ’-এর কথা চিন্তা করলেই বিদেশে আমাদের প্রথম উদ্যোগের কথা হিসেবে সিলিকন ভ্যালির কথাই স্বাভাবিকভাবেই আমাদের মনে এসে যায়। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে রয়েছে এক স্বাভাবিক উদ্ভাবন ও প্রযুক্তির সমন্বয়ে গড়ে ওঠা অংশীদারিত্ব, যা জ্ঞাননির্ভর অর্থনীতিকে নতুন রূপ দিতে পেরেছে। এখানে ‘স্টার্টআপ’-এর কাজে যুক্ত কর্মীদের ১৫ শতাংশই ভারতীয় বলে আমি জানি। এখানে এবং ভারতে হাজার হাজার ভারতীয় পেশাদার কর্মীর অবদান রয়েছে আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে মার্কিন সংস্থার সাফল্যের পেছনে। তাঁদের অনেকেই আজ শীর্ষস্থানের অধিকারী। পরবর্তী প্রজন্মের জন্য উন্নত জৈব জ্বালানি, সৌরশক্তি এবং জ্বালানি সাশ্রয়ের লক্ষ্যে আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়, গবেষণাগার এবং সংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলি একযোগে কাজ করে চলেছে। গ্রামীণ ভারতে সুলভে জৈব চিকিৎসা-পদ্ধতি পৌঁছে দিতে স্ট্যানফোর্ডের পণ্ডিত ও গবেষকরা দিল্লির ভারতীয় গবেষকদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে কাজ করছেন। আমাদের মাঝে আজ এখানে উপস্থিত আছেন স্ট্যানফোর্ডের তরুণ ভারতীয় বিজ্ঞানী মনু প্রকাশ, যাঁর নামে বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি গবেষণাগারও রয়েছে। আমাদের সহযোগিতা ও সমন্বয়ের শক্তি হল এটাই। এখানে বসেই আপনারা প্রত্যন্ত গ্রামের এক ছোট্ট শিশুর নাড়িস্পন্দন অনুভব করতে পারবেন। আমার আশা যে, ভারতের এক ছোট্ট শহরের ছোট্ট একটি মেয়ে আজ এই প্রদর্শকদের চাক্ষুষ করে তার নিজের প্রকল্প গড়ে তোলার স্বপ্ন দেখবে। হয়তো মুম্বাই কিংবা উপসাগরীয় অঞ্চলের কোনও একজন তার স্বপ্নকে একদিন সফল করে তুলবে। ডিজিটাল সেতুবন্ধনের সম্ভাবনা হল এটাই – পরস্পরের থেকে দূরে বসবাসকারী মানুষের জীবনকে যুক্ত করা এবং তাঁদের অদৃষ্ট ও ভবিষ্যতকে পরিবর্তনের পথে নিয়ে যাওয়া। যুবশক্তি ও উদ্ভাবনের সম্ভাবনার বীজ লুকিয়ে রয়েছে এখানেই। ভারত ও মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে অংশীদারিত্বের বাতি প্রজ্জ্বলিত হতে পারে এর সাহায্যেই, তা আমাদের দু’দেশের সমৃদ্ধিকে ত্বরান্বিত করতে পারে এবং আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের মধ্যে জাগিয়ে তুলতে পারে এক নতুন সম্ভাবনা। আজ আমি অনেক নতুন নতুন অংশীদারিত্ব গড়ে ওঠায় বিশেষ আনন্দিত। আমি জানি, উদ্যম ও প্রতিভা এই দুটি শক্তিকে অবলম্বন করে আপনারা সাফল্য অর্জন করবেন। কিন্তু, যখনই আপনাদের কোনও সহযোগীর প্রয়োজন হবে কিংবা চলার পথে কোনও বাধা-বিপত্তির মুখে পড়বেন আমরা থাকবো আপনাদের পাশেই। আজকের এই বিশেষ দিনটির জন্য ন্যাসকম, ইন্ডিয়ান ইন্সটিটিউট অফ ম্যানেজমেন্ট আমেদাবাদ এবং টাই সিলিকন ভ্যালি’কে আমি ধন্যবাদ জানাই। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী সিআইএসএফ-এর প্রতিষ্ঠা দিবসে এই বাহিনীরকর্মী ও আধিকারিকদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। তিনি বলেছেন, “কেন্দ্রীয় শিল্প নিরাপত্তাবাহিনীর প্রতিষ্ঠা দিবসে আমি সংশ্লিষ্ট সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। আইআরএনএসএস-১জি উপগ্রহের সফল উৎক্ষেপণ আজ নয়াদিল্লির সাউথ ব্লকের দপ্তর থেকে প্রত্যক্ষ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। আজ দুপুর ১২-৫০ মিনিটে শ্রীহরিকোটা থেকে এই উপগ্রহটি উৎক্ষেপণ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, “এই সফল উৎক্ষেপণের মধ্য দিয়ে এবং প্রযুক্তিকে সম্বল করে আমরা আমাদের নিজেদের পথ ঠিক করে নেব। এই ঘটনাকে ‘নেভিগেশন উইথ ইন্ডিয়ান কনস্টেলেশন’ বলে অভিহিত করেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার (২৬শে অক্টোবর) ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে লক্ষ্ণৌতে আয়োজিত কৃষি কুম্ভ অনুষ্ঠানে ভাষণ দেন। কৃষকদের এই সমাবেশ নতুন প্রযুক্তি গ্রহণের ক্ষেত্রে সুদূরপ্রসারী ভূমিকা নেবে এবং কৃষিক্ষেত্রে আরও সুযোগ-সুবিধার সৃষ্টি হবে বলে প্রধানমন্ত্রী আস্থা প্রকাশ করেন। খাদ্যশস্য সংগ্রহ ব্যবস্থার সুবিধা ধারাবাহিকভাবে বৃদ্ধি করার জন্য শ্রী মোদী উত্তরপ্রদেশ সরকারের প্রচেষ্টার প্রশংসা করেন। তিনি বলেন, কৃষকরাই সেইসব ব্যক্তি যাঁরা দেশকে এগিয়ে নিয়ে চলেছেন। ২০২২ সাল নাগাদ কৃষকদের উপার্জন দ্বিগুণ করার ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকারের অঙ্গীকারের কথাও তিনি পুনরায় উল্লেখ করেন। এ প্রসঙ্গে, তিনি কৃষকদের কল্যাণে উৎপাদন খরচ কমিয়ে লাভ বাড়ানোর লক্ষ্যে সরকারের একাধিক পদক্ষেপের উল্লেখ করেন। অদূর ভবিষ্যতে দেশ জুড়ে কৃষিক্ষেত্রে বিরাট সংখ্যায় সৌরবিদ্যুৎচালিত পাম্প বসানো হবে বলেও তিনি জানান। বিজ্ঞানের সুফল কৃষিক্ষেত্রে পৌঁছে দিতে সরকার চেষ্টা চালাচ্ছে। বারাণসীতে ধান গবেষণা কেন্দ্র স্থাপন এই লক্ষ্যে এক পদক্ষেপ বলে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। কৃষিতে মূল্য সংযুক্তিকরণের প্রয়োজনীয়তার কথাও প্রধানমন্ত্রী গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন। কৃষি কুম্ভ অনুষ্ঠান চলাকালীন জলসম্পদের যুক্তিসম্পন্ন ব্যবহার, খাদ্যশস্য মজুত রাখার ক্ষেত্রে প্রযুক্তি আরও ভালো প্রয়োগ এবং কৃষিতে সর্বাধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহারের মতো গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে প্রধানমন্ত্রী আলাপ-আলোচনার আহ্বান জানান। বিশ্ববাসীকে ইস্টারের শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “বিশ্ববাসীকে জানাই ইস্টারের অভিনন্দন। ভারতের জনসাধারণের আশা-আকাঙ্ক্ষা ও প্রত্যাশা পূরণে নীতি রচনার কাজেসচিবদের সমষ্টিগতভাবে জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাকে কাজে লাগানোরও পরামর্শ দেনপ্রধানমন্ত্রী। এই স্টার্ট-আপগুলিও আবার বেশ কিছু জাতীয় সমস্যা নিরসনের প্রশ্নে সামনের সারিতে আছে। তাঁদের জন্য বলছি, যাঁরা স্টার্ট-আপ আন্দোলনে কাজ করছেন বা একটার পর একটা কলেজ খোলার পরিকল্পনা করছেন, দয়া করে মনে রাখবেন, বিগত দিনের স্টার্ট-আপগুলিই আজকের দিনের বৃহত্তম উদ্যোগ হয়ে উঠেছে। সেগুলি হ’ল – আদর্শবাদের সঙ্গে কঠোর পরিশ্রম ও অধ্যবসায়ের মেল-বন্ধন। এটাকেই ধরে রাখুন, ছেড়ে দেবেন না, তবেই আপনি সাফল্য পাবেন। আপনারা ভাগ্যবান যে মুম্বাইয়ের মত নগরীতে এরকম একটা ক্যাম্পাসে থাকার সুযোগ পেয়েছেন। আপনাদের একদিকে জলাশয় অন্যদিকে পাহাড়ও আছে। সময়ে-সময়ে হয়ত আপনারা কুমির ও চিতাবাঘের সঙ্গে সময় কাটান এই ক্যাম্পাসে। এখন আগস্ট মাস, কিন্তু আমি নিশ্চিত যে, আপনারা আজ স্বপ্নিল মেজাজে আছেন। আমি এটাও ঠিক জানি, এখানে বিগত চার বছরে আপনারা অনবদ্য শিক্ষা-অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে কাটিয়েছেন। বিভিন্ন রাজ্য থেকে বিভিন্ন ভাষা, ভিন্ন প্রেক্ষাপট থেকে এখানে এসে আপনারা জ্ঞান ও শিক্ষার অঙ্গণে একাকার হয়ে গেছেন। ভারতকে বিকশিত অর্থনীতি হিসেবে গড়ে তুলতে উদ্ভাবন ও স্ব-উদ্যোগই ভিত্তিপ্রস্তর হয়ে উঠতে চলেছে। এই ভিত্তির ওপর দাঁড়িয়েই এক দীর্ঘমেয়াদী প্রযুক্তিনির্ভর আর্থিক বিকাশ সম্ভব হবে। একবিংশ শতাব্দীর মূল গুঞ্জনধ্বনি হচ্ছে, উদ্ভাবন। কোনো সমাজের উদ্ভাবনী শক্তি না থাকলে একে থমকে যেতে হবে। ভারত যখন স্টার্ট-আপের কেন্দ্রবিন্দু হয়ে উঠছে, দেখা যাচ্ছে এখানে খুবই বেশি মাত্রায় উদ্ভাবনের জন্য আকুতি ছড়ানো আছে। কিন্তু তা শুধু একা সরকারের প্রয়াসে হবে না। এটা সম্ভব করতে হবে আপনাদের মত নবীন শক্তির মাধ্যমে। সেরা ভাবনা-চিন্তাগুলি কিন্তু সরকারী ভবন বা ঝাঁ-চকচকে অফিসে আসে না। সেগুলি আপনাদের ক্যাম্পাসের মত জায়গায়, আপনাদের মত নবীনদের মাথাতেই আসে। আপনাদের এবং অন্য অনেক আপনাদেরই মত তরুনদের প্রতি আমার আবেদন,ভারতে উদ্ভাবন করুন, মানব সমাজ ও সভ্যতার জন্য উদ্ভাবন করুন। আমাদের দিক থেকে ভারতে গবেষনা ও উদ্ভাবনকে উদ্দীপ্ত করতে সম্ভাব্য সমস্ত প্রয়াসই আমরা চালিয়ে যাচ্ছি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি বৃহস্পতিবার ভারত সরকারের সচিবদের সঙ্গে ৭০ মিনিটের বেশি সময় ধরে আলাপ-আলোচনা ও মত-বিনিময় করেন। সচিবরা আগামী দুসপ্তাহ ধরে নিজেদের মধ্যে সাব-গ্রুপ তৈরি করে আলাপ-আলোচনা করবেন।এরপর আলোচনা থেকে গৃহীত চিন্তা-ভাবনা ও পরামর্শ সচিবরা প্রধানমন্ত্রীর কাছে পেশ করবেন। এবং আমাদের বন্ধু ও সহযোগীআফগানিস্থানের রাষ্ট্রপতি আশরফ ঘানির সঙ্গে এই সম্মেলনের উদ্বোধন করাটা আরও বিশেষকরে আনন্দের| এমনকি আজকেও পাঞ্জাবে আফগানবংশোদ্ভুত সুফি সাধক বাবা হজরত শেখ-এর মাজারে সকল ধর্মের মানুষ শ্রদ্ধা জানান,দর্শনার্থীরা আসেন আফগানিস্থান থেকেও| এবংতা আফগানিস্থানকে সহায়তা করবে: *এর সামাজিক, রাজনৈতিক ওপ্রাতিষ্ঠানিক পরিকাঠামকে নির্মাণ ও শক্তিশালী করার কাজে; *বাহ্যিক হুমকি থেকে এরএলাকা ও নাগরিকদের নিরাপদ রাখার কাজে; *এর অর্থনৈতিক ও উন্নয়নকর্মসূচিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য; *এবং এর নাগরিকদের জন্য একটিস্থায়ী ও সমৃদ্ধশালী ভবিষ্যত গড়বে | প্রকৃতপক্ষে, এটাও হচ্ছেসম্মেলনের প্রধান লক্ষ্য যা যথাযথভাবে এর মূল ভাবে ধরা পড়েছে—“প্রতিকুলতামোকাবিলা: সমৃদ্ধি অর্জন”| আফগানিস্থানে আমাদেরসহযোগিতার প্রচেষ্টা এর পরিকাঠামোগত ও প্রাতিষ্ঠানিক দক্ষতা এবং প্রবৃদ্ধিরস্বচালিত শক্তিতে হওয়া উচিত| চতুর্থত আফগানিস্থান ও এইঅঞ্চলের অন্যান্য দেশের মধ্যে শক্তিশালী ইতিবাচক সংযোগ তৈরি করার জন্য আমাদেরকেকাজ করতে হবে| আমাদের যুগ্ম উদ্যোগ: *আফগানিস্থানের তরুন সমাজকেশিক্ষিত করা ও তাদের দক্ষতার প্রতিপালন করা; *স্বাস্থ্য সুরক্ষা প্রদান ওকৃষি উন্নয়ন; *পরিকাঠামো ও প্রতিষ্ঠাননির্মাণ; এবং *আফগানিস্থানের বণিক ওক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদেরকে ভারতের অপরিমেয় বাণিজ্যিক ও অর্থনৈতিক সুযোগের সঙ্গেসংযুক্ত করা| আমরাবিমান পথেও আফগানিস্থানকে ভারতের সঙ্গে সংযুক্ত করার পরিকল্পনা করছি| আমাদের মনে রাখতে হবে যেপ্রতিদিন আমরা আফগানিস্থানকে এর সফল রাজনৈতিক, নিরাপত্তা ও আর্থিক রুপান্তরের জন্যসহায়তার মাধ্যমে আমাদের এই অঞ্চল ও বিশ্বকে শান্তিপূর্ণ রাখার জন্য আমরা নিজেদেরকেসহায়তা করছি| আমি আশা করছি যে আপনাদেরআলোচনা গঠনমূলক ও দূরদর্শী পথ তৈরি করবে, যা থেকে হবে: *বিরোধের জায়গায় সহযোগিতা, *প্রয়োজনের জায়গায় উন্নয়নএবং সন্ত্রাসবাদের জায়গায় নিরাপত্তা| প্রতি দু’বছর বাদে বাদে এই কর্মীগোষ্ঠী ভারত এবং উজবেকিস্তানে বৈঠকে বসবে। পাঁচ বছরের জন্য এই চুক্তিটি কার্যকর থাকবে এবং প্রতি পাঁচ বছর অন্তর স্বয়ংক্রিয়ভাবে এর পুনর্নবীকরণ হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা ভারত-বাংলাদেশের চুক্তিকৃত পথের মধ্যে কুশিয়ারা নদীর আশুগঞ্জ-জাকিগঞ্জ অংশে এবং যমুনা নদীর সিরাজগঞ্জ-দইখাওয়া অংশে যৌথভাবে নদীর তলদেশে প্রয়োজনীয় খোদাই করে (ড্রেজিং) জলপথের উন্নয়নের জন্য ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার সমঝোতা স্মারকে (মউ) অনুমোদন দিল| আজ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে এই মহার্ঘ ভাতা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এর ফলে উপকৃত হবেন ৫০ লক্ষ কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মী এবং ৫৮ লক্ষ পেনশনার। মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ ৬ শতাংশ মহার্ঘ ভাতা বৃদ্ধির সিদ্ধান্তের কথা ঘোষণা করা হয়। ডিজি পুলিশএবং আইজি পুলিশদের এক সম্মেলনে যোগ দিতে রবিবার মধ্যপ্রদেশের তেকানপুরের বিএসএফঅ্যাকাডেমিতে এসে পৌঁছন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। নিরাপত্তাসম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয়ের ওপর গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা ও উপস্থাপনার মধ্য দিয়েই প্রধানমন্ত্রীরঅতিবাহিত হয় এই দিনটি। গত তিন বছরে গৃহীত সিদ্ধান্তগুলির বাস্তবায়নের বর্তমানঅবস্থার ওপরও একটি উপস্থাপনা পেশ করা হয় প্রধানমন্ত্রীর কাছে। অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণীর (ওবিসি) সাংসদ ও বিজেপি নেতাদের একটি প্রতিনিধিদল মঙ্গলবার নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। প্রতিনিধিদলের সদস্যরা অন্যান্য অনগ্রসর শ্রেণী কমিশনকে সাংবিধানিক মর্যাদা প্রদান করার জন্য প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ দেন। সদস্যরা বলেছেন, এই ঐতিহাসিক পদক্ষেপ ওবিসি সম্প্রদায়কে শক্তিশালী করতে সাহায্য করবে। প্রতিনিধিদলটির সদস্যদের সহায়তা ও সমর্থনের জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁদের ধন্যবাদ জানান। বিশেষ করে, তৃণমূল-স্তরে ওবিসি সম্প্রদায়ের আরও উন্নয়নের জন্য নিরবচ্ছিন্ন কাজ করে যেতে প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিধিদলটিকে উৎসাহিত করেন। ওবিসি সম্প্রদায়ের মানুষের অধিকার সম্বন্ধে সচেতন করে তোলার জন্য প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিধিদলটির প্রতি আহ্বান জানান। আন্টার্টিকায় মাউন্ট ভিনসন অভিযানে যাওয়ার আগে অরুনিমা সিনহার হাতে ত্রিবর্ণরঞ্জিত জাতীয় পতাকা তুলে দিলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। মাউন্ট এভারেস্ট অভিযানকারী প্রথম দিব্যাঙ্গ মহিলা অরুনিমা সিনহা গতকাল নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে আন্টার্টিকায় তাঁর আসন্ন পর্বতাভিযান সম্পর্কে অবহিত করেন। শ্রী মোদী তাঁর অসাধারণ সাফল্যের প্রশংসা করে এবারের অভিযানের জন্য তাঁকে শুভকামনা জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (৮ই এপ্রিল) মালদ্বীপের রাষ্ট্রপতি ইব্রাহিম মহম্মদ সোলির সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেন এবং সদ্য সংসদীয় নির্বাচনে মালদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির জয়লাভের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংসদীয় নির্বাচনে মালদ্বীপ ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এই জয় দলের নেতাদের নীতি ও প্রয়াসের প্রতি ব্যাপক সমর্থনকেই প্রতিফলিত করে। সফলভাবে নির্বাচন সমাপ্ত হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী সে দেশের রাষ্ট্রপতিকে অভিনন্দন জানিয়ে বলেন, এই নির্বাচন গণতন্ত্রকে মজবুত এবং মালদ্বীপের গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠানগুলির সক্ষমতাই সূচিত করে। ‘প্রতিবেশীরাই সর্বাগ্রে’ – এই নীতি বিবেচনায় রেখে প্রধানমন্ত্রী, মালদ্বীপের সঙ্গে ভারতের আরও ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে কাজ করা এবং পারস্পরিক অংশীদারিত্বকে আরও নিবিড় করার প্রসঙ্গ পুনরায় উল্লে করে বলেন, সে দেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে প্রয়োজনীয়তা অনুযায়ী ভারত সাহায্য দেবে। প্রধানমন্ত্রী, সে দেশের প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি মহম্মদ নাশিদের সঙ্গেও ফোনে কথা বলেন এবং নির্বাচনে বিপুল জয়ের জন্য তাঁকে অভিনন্দন জানান। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বিশ্বের সর্বোচ্চ মূর্তি ‘ঐক্যের প্রতিমূর্তি’ জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করেছেন। গুজরাটের নর্মদা জেলার কেভাডিয়ায় সর্দার বল্লভ ভাই প্যাটেলের জন্মবার্ষিকীতে ১৮২ মিটার উচ্চতার এই মূর্তিটি জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করা হয়। উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ‘ঐক্যের প্রতিমূর্তি’র জাতির উদ্দেশে উৎসর্গ করতে প্রধানমন্ত্রী ও অন্যান্য অতিথিরা স্মারক হিসাবে নর্মদা নদীর জল ও মাটি দিয়ে একটি কলস পূর্ণ করেন। প্রধানমন্ত্রী একটি লিভারের সাহায্যে মূর্তির আনুষ্ঠানিক অভিষেক করেন। তিনি একতা দেওয়ালেরও উদ্বোধন করেন। প্রধানমন্ত্রী ‘ঐক্যের প্রতিমূর্তি’র পাদদেশে বিশেষ প্রার্থনায় অংশ নেন। তিনি সংগ্রহশালা, প্রদর্শনী ও দর্শকদের জন্য নির্ধারিত গ্যালারি ঘুরে দেখেন। এই গ্যালারি থেকে সর্দার সরোবর বাঁধ, এর জলাধার এবং সাতপুরা ও বিন্ধ পর্বতমালার অপূর্ব দৃশ্য পর্যটকরা উপভোগ করতে পারবেন। আজকের দিনটি ভারতের ইতিহাসে এক বিশেষ মূহুর্ত বলে তিনি মন্তব্য করেন। এই ‘ঐক্যের প্রতিমূর্তি’ তৈরির মাধ্যমে ভারত প্রগতিশীল ভবিষ্যতের জন্য নিজেকে নিজে উদ্বুদ্ধ করছে। এই মূর্তি, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে সর্দার প্যাটেলের আদর্শ, ক্ষমতা ও সাহসিকতা সম্পর্কে স্মরণ করাবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সর্দার প্যাটেল যে ঐক্যবদ্ধ ভারত গড়ে তুলেছিলেন, তার ফলশ্রুতিতেই দেশ বর্তমানে অর্থনৈতিক ও কৌশলগত দিকে ক্রমশ শক্তিশালী হয়ে উঠছে। প্রধানমন্ত্রী প্রশাসনিক কাজে সর্দার প্যাটেলের চিন্তাভাবনার কথাও স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ‘ঐক্যের প্রতিমূর্তি’ তৈরি করার জন্য যে কৃষকরা তাঁদের জমি দিয়েছেন এবং লোহা দিয়েছেন – এই মূর্তি তাঁদের আত্মসম্মানের প্রতীক। ‘এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত’ – এই মন্ত্রের মাধ্যমেই ভারতের তরুণ প্রজন্মের মধ্যে দেশপ্রেম জাগিয়ে তোলা সম্ভব। এই মূর্তি নির্মাণের কাজে জড়িত প্রত্যেককে শ্রী মোদী অভিনন্দন জানান। এই মূর্তি নির্মাণ হওয়ায় এই অঞ্চলে পর্যটনের সুযোগ বৃদ্ধি হবে বলেও তিনি মন্তব্য করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সাম্প্রতিক কয়েক বছরে দেশের স্বাধীনতা সংগ্রামী ও মহান নেতাদের কাজের স্মরণে বেশ কয়েকটি স্মারক নির্মাণ করা হয়েছে। এই লক্ষ্যে সকলের জন্য আবাস, সকলের জন্য বিদ্যুতায়ন, সড়ক যোগাযোগ, ডিজিটাল যোগাযোগের মতো সুবিধাগুলির কথা উল্লেখ করেন তিনি। শ্রী মোদী, প্রধানমন্ত্রী জন আরোগ্য যোজনার বিষয়টিও উত্থাপন করেন। তিনি বলেন, জিএসটি এবং ই-ন্যামের মতো সরকারি উদ্যোগগুলি বিভিন্নভাবে দেশকে ঐক্যবদ্ধ করতে সাহায্য করছে। নয়াদিল্লি, ১৯ ফেব্রুয়ারি, ২০১৫ প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী চিন, কোরিয়া, ভিয়েতনাম ও মঙ্গোলিয়ার জনগণকে তাঁদের নববর্ষ উপলক্ষ্যে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। শুভেচ্ছা বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “চিনা নববর্ষের সূচনায় অনেক অনেক শুভেচ্ছা। নববর্ষ আপনাদের জীবনে শান্তি, আনন্দ ও সমৃদ্ধি নিয়ে আসুক। সারা বিশ্ব জুড়ে আমার কোরীয় বন্ধুদেরও নতুন বছরের শুভেচ্ছা। আমার মঙ্গোলীয় ভাই ও বোনেদের নববর্ষের শুভেচ্ছা। নতুন বছর আপনাদের জন্য শুভ হোক এবং আপনাদের জীবন সাফল্য, আনন্দ ও সুস্বাস্থ্যে ভরে উঠুক”। শ্রীনরেন্দ্র মোদী বলেন, সাম্প্রতিক ভূমিকম্পের পর নেপালে স্বাভাবিক অবস্থা ফিরিয়েআনতে এবং সেখানে পুনর্গঠন ও পুনর্নিমাণ কাজে ঐ দেশের সরকার ও জনসাধারণের সঙ্গেসর্বতোভাবে সহযোগিতা করতে ভারত অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ জাতীয় প্রেস ডে উপলক্ষে প্রেস কাউন্সিল অফ ইন্ডিয়ার একটিঅনুষ্ঠানে যোগ দেন। প্রেস কাউন্সিলের সুবর্ণ জয়ন্তী উপলক্ষেও অনুষ্ঠানটি অনুষ্ঠিতহয়। এই উপলক্ষে,ভাষণকালে প্রধানমন্ত্রী সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতার গুরুত্বের ওপর জোর দিয়ে বলেন,সংবাদ মাধ্যমের উচিৎ স্বনিয়ন্ত্রণ করা, কারণ সংবাদ মাধ্যমের ওপর বাইরের হস্তক্ষেপবা নিয়ন্ত্রণ কাঙ্ক্ষিত নয়। এর ফলে, দু’দেশেই প্রতিষ্ঠান দুটির মর্যাদা ও সম্মান যেমন বাড়াবে, তেমনই পারস্পরিক সহযোগিতাও আরও মজবুত হবে। সরকারি এই সিদ্ধান্তের ফলে নগদ অর্থের মাধ্যমে লেন-দেনের ঘটনা যেমন হ্রাস পাবে অন্যদিকে, তেমনই কর ফাঁকির প্রবণতাও অনেকাংশে রোধ করা সম্ভব হবে। এজন্য সারচার্জ, পরিষেবা ফি, কার্ড বা ডিজিটাল পদ্ধতিতে লেন-দেন সংক্রান্ত ফি ইত্যাদি প্রত্যাহার করে নিতে পদক্ষেপ গ্রহণের কথাও বলা হয়েছে। মাননীয় রাষ্ট্রপতি মহোদয়, মাননীয় উপ-রাষ্ট্রপতি মহোদয়, লোকসভার মাননীয়অধ্যক্ষ মহোদয়া, প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মাননীয় দেবগৌড়া মহোদয়, আমার মন্ত্রীপরিষদের সাথীবৃন্দ, সংসদের সকল সম্মানিত সদস্যবৃন্দ, আর নানা ক্ষেত্র থেকে সমাগতসকল মাননীয় ব্যক্তিবর্গ, রাষ্ট্র নির্মাণে এমন কিছু মুহূর্ত আসে, যখন আমরা কোনও মোড়ে পৌঁছাই, নতুনলক্ষ্যে পৌঁছনোর চেষ্টার সূত্রপাত হয়। আজ মধ্যরাত্রে আমরা সবাই মিলে দেশে আগামীদিনের চলার পথকে সুনিশ্চিত করতে যাচ্ছি। কিছুক্ষণ পর, দেশ একটি নতুন ব্যবস্থার দিকে এগিয়ে যাবে। ১২৫ কোটি দেশবাসীএই ঐতিহাসিক ঘটনার সাক্ষী। জিএসটি’র এই প্রক্রিয়া, এটা কেবলই অর্থ ব্যবস্থার মধ্যেসীমিত বলে আমি মনে করি না। এহেন পবিত্রস্থানে আমরা বসে আছি। আরসেজন্য আজ সেন্ট্রাল হল, এই ঘটনার সঙ্গে আমরা স্মরণ করি, ৯ ডিসেম্বর, ১৯৪৬,সংবিধানসভার প্রথম বৈঠকের সাক্ষী এই সভাগৃহ।আমরা সেই স্থানে বসে আছি। এই সভা ১৯৪৭ সালে ১৪ আগস্ট রাত ১২টায় দেশ স্বাধীন হওয়ার সেই মহান ঘটনারসাক্ষী। ১৯৪৯ সালের ২৬ নভেম্বর তারিখে দেশ যখন সংবিধানকে স্বীকার করে নিয়েছে, এইকক্ষ সেই মহান ঘটনার সাক্ষী। কিন্তু অনেক পরিশ্রম এবং অনেক মেধার শক্তির সম্মিলিতপ্রয়াসে এই কঠিন কাজটি সম্পাদিত হচ্ছে। চাণক্য বলেছিলেন – ২৯টি রাজ্য, ৭টি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল আর কেন্দ্রীয় সরকারের ৭টি কর, রাজ্যসরকারের ৮টি কর এছাড়া প্রত্যেক জিনিসের আলাদা-আলাদা কর-এর হিসাব রাখা সারা দেশেপ্রায় এমনই ৫০০টি নানা প্রকারের কর দিতে হ’ত। আজ ঐ সবকটি কর থেকে মুক্তি পেয়েগঙ্গানগর থেকে ইঁটানগর আর লে থেকে লাক্ষ্মাদ্বীপ ‘এক দেশ, এক কর’ ব্যবস্থা আমাদেরএই স্বপ্ন আজ সফল হতে চলেছে। আমিভাবি, যদি আজ আমাদের দেশে অ্যালবার্ট আইনস্টাইন থাকতেন, তা হলে তিনি আমাদের দেশেএতগুলি কর দেখে কী বলতেন, কী ভাবতেন? আমি ভাবছিলাম, উৎপাদন ক্ষেত্রে উৎপাদিত পণ্যনিজেদের বাজারে থাকলে তেমন অসাম্য থাকে না। কিন্তু বাইরে পাঠালে বিভিন্ন রাজ্যেরভিন্ন ভিন্ন কর-এ অসাম্য পরিলক্ষিত হয়। একই জিনিস দিল্লিতে একটা দাম হবে, আর ২০-২৫কিলোমিটার দূরে গুরুগ্রামে আরেক রকম দাম, আবার অন্যদিকে নয়ডা’তে গেলে আরেক রকমদাম। কারণ, হরিয়ানার কর আলাদা, উত্তর প্রদেশের কর আলাদা আর দিল্লির কর আলাদা। আজ আমরা সেই বিভ্রান্তি থেকে মুক্তির পথে পাবাড়িয়েছি। অরুণজি বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেছেন যে, জিএসটিচালু হলে অক্টরয় ব্যবস্থা হোক, প্রবেশ কর হোক কি বিক্রয় কর হোক, মূল্যযুক্ত কর হোকআরও অনেক কর থেকে মানুষ মুক্তি পাবেন। আজ আমরা এই সকল অব্যবস্থা থেকে মুক্তি পেতেযাচ্ছি। জিএসটি রূপে আজ দেশে একটি অত্যাধুনিক কর ব্যবস্থা চালু হচ্ছে। এই ব্যবস্থা কালো ধন ও দুর্নীতিকে রুখতে সক্ষম। সততাকে, সৎভাবে বাণিজ্যকরার উৎসাহ ও উদ্দীপনা যোগাবে এই ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থা নতুন প্রশাসনিক সংস্কৃতিপ্রণয়ন করবে। এইসম্পূর্ণ ব্যবস্থায় যে ব্যবসায়ীদের মোট ব্যবসা ২০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, তাঁদেরকে এইকর থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। আর যাঁদের ব্যবসা ৭৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত, তাঁদের জন্যওঅনেক ক্ষেত্রে ছাড় দেওয়া হয়েছে। কিন্তু সরল ভাষায় বলা হলে এই ব্যবস্থা দেশের গরিবদেরপক্ষে সর্বাধিক সার্থক প্রতিপন্ন হবে। স্বাধীনতার ৭০ বছর পরও আমরা দরিদ্রদের কাছেপৌঁছতে পারিনি। কারণ, এটা নয় যে চেষ্টা হয়নি। যাঁরা আশঙ্কা করেন যে, তাঁদেরকে অনুরোধ দয়া করেএরকম করবেন না। ভারত ইতিমধ্যেই সব ধরনের স্বীকৃতিপেয়েছে। সেজন্য আমি মনে করি, নতুন কর ব্যবস্থা বিশ্ব বাণিজ্যে ভারতের স্থানকে অনেকউন্নত করবে। জিএসটি দেশের বাণিজ্য ক্ষেত্রে এমন এক অনুঘটকরূপে কাজ করবে, যা সকল রকম ভারসাম্যহীনতাকে সমাপ্ত করবে। জিএসটি এমন অনুঘটক রূপেকাজ করবে, যা দেশের রপ্তানি বাণিজ্য বৃদ্ধিতে অত্যন্ত সহায়ক হবে। এই ব্যবস্থারমাধ্যমে দেশের যে রাজ্যগুলি বাণিজ্যে উন্নত, তাদের উন্নয়নের সুযোগ বাড়বে আর যেরাজ্যগুলি পিছিয়ে রয়েছে, যারা প্রাকৃতিক সম্পদে সমৃদ্ধ যেমন – বিহার, পূর্ব উত্তরপ্রদেশ, পশ্চিমবঙ্গ, ওড়িশা এবং উত্তর-পূর্ব ভারতের রাজ্যগুলি এই নতুন কর ব্যবস্থারমাধ্যমে দ্রুত উন্নয়নের সুযোগ পাবে। এই কর ব্যবস্থা ভারতের সকল রাজ্যের উন্নয়নকেসমান সুযোগ দেবে। ২০২২ সালে ভারতের স্বাধীনতার ৭৫ বছর পূর্তিহচ্ছে। আমরা ‘নিউ ইন্ডিয়া’র স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছি। ১২৫ কোটি ভারতবাসী এই ‘নিউইন্ডিয়া’র স্বপ্ন নিয়ে এগিয়ে চলেছে। ভাই ও বোনেরা, এই ‘নিউ ইন্ডিয়া’র স্বপ্ন সফলকরতে জিএসটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে। আমি আজ এই উপলক্ষে মাননীয় রাষ্ট্রপতির কাছেকৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করছি, কারণ তিনি তাঁর মূল্যবান সময় দিয়েছেন বলে নয়, এই সম্পূর্ণযাত্রার তিনিই অন্যতম পথপ্রদর্শক সঙ্গী রূপে সহযাত্রী রূপে এর প্রত্যেক পর্যায়কেভালভাবে দেখে, জেনে, যাচাই করে একে এগিয়ে নিয়ে যেতে সাহায্য করেছেন। তাঁর এইপথপ্রদর্শকের ভূমিকা আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ ঐতিহাসিক মুহূর্তে আমাদের সকলের জন্যএকটি অত্যন্ত প্রেরণার উৎস। নতুন উৎসাহ ও উদ্দীপনা নিয়ে আমরা সকলেই একে এগিয়ে নিয়েযাব। আমি এই পথপ্রদর্শকের ভূমিকা পালন করার জন্যআমাদের সকলের পক্ষ থেকে মাননীয় রাষ্ট্রপতির কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করব, আপনারনেতৃত্ব আমাদের নতুন প্রেরণা যুগিয়ে যাবে। আমি আরেকবার এই প্রক্রিয়ার সঙ্গে যুক্তসকলের কাছে কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করে আমার বক্তব্যে ইতি টানছি। আগামীকাল দেরাদুনে চতুর্থ আন্তর্জাতিক যোগ দিবস উদযাপনের অনুষ্ঠানের নেতৃত্ব দেবেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। হিমালয়ের কোলে দেরাদুনের ফরেস্ট রিসার্চ ইন্সটিটিউট বা অরণ্য গবেষণা প্রতিষ্ঠানে হাজার হাজার স্বেচ্ছাসেবকের সঙ্গে যোগাসন করবেন প্রধানমন্ত্রী। প্রসঙ্গত, সারা দেশে এবং সমগ্র বিশ্বেই যোগ সংক্রান্ত প্রচুর অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়েছে আগামীকাল। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, প্রাচুর্যের জগতে যোগ সংবরণ এবং ভারসাম্যের এক নাম। মানসিক পীড়ার জগতে যোগ শান্তির ধারকবাহক। আন্তর্জাতিক যোগ দিবসের প্রেক্ষিতে বিভিন্ন যোগাসনের খুঁটিনাটি সোশ্যাল মিডিয়ায় দেখানোর ব্যবস্থাও করেছেন প্রধানমন্ত্রী। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ কার নিকোবর সফর করেন। সেখানে তিনি সুনামি স্মৃতিসৌধে পুষ্প স্তবক অর্পণ করে প্রয়াতদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে মোমবাতি প্রজ্জ্বলন করেন। এই দীপপুঞ্জের অধিবাসী বিভিন্ন উপজাতি গোষ্ঠীর প্রধান সহ বিশিষ্ট ক্রীড়াবিদদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। আরোং – এ এক জনসভায় প্রধানমন্ত্রী শিল্প প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান (আইটিআই) সহ আধুনিক একটি স্পোর্টস্‌ কমপ্লেক্সের উদ্বোধন করেন। মাস জেটিতে তিনি উপকূলবর্তী এলাকা সুরক্ষা সংক্রান্ত কাজকর্মের শিলান্যাস ও ক্যাম্বেল বে জেটির সম্প্রসারণের সূচনা করেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী তাঁর ভাষণে আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য, সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও শিল্পকলার কথাও উল্লেখ করেন। দ্বীপপুঞ্জের পারিবারিক তথা সার্বিক ঐতিহ্যের কথা উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এই ঐতিহ্য বহু বছর ধরে ভারতীয় সমাজের শক্তি বৃদ্ধি করে এসেছে। এই অনুষ্ঠানে যোগদানের পূর্বে প্রধানমন্ত্রী সুনামি স্মৃতিসৌধ পরিদর্শনের কথাও উল্লেখ করেন। সুনামির পর এই দ্বীপপুঞ্জের পুনর্গঠনে নিকোবরবাসীর উৎসাহ এবং কঠোর পরিশ্রমের তিনি প্রশংসা করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আজ যে সমস্ত প্রকল্পের সূচনা হয়েছে, সেগুলি শিক্ষা, স্বাস্থ্য, কর্মসংস্থান, দক্ষতা উন্নয়ন, পরিবহণ, শক্তি, ক্রীড়া ও পর্যটন ক্ষেত্রের উন্নয়নে সুদূরপ্রসারী হয়ে উঠবে। উন্নয়নের দিশায় অগ্রসর হওয়ার পথে কোনও দেশবাসী বা দেশের কোনও অংশই পিছিয়ে থাকবে না বলে সরকারের দৃঢ় অঙ্গীকারের কথা তিনি পুনরায় ব্যক্ত করেন। শ্রী মোদী বলেন, দূরত্ব কমিয়ে হৃদয়ের আরও কাছকাছি নিয়ে আসার মানসিকতা গড়ে তোলাই এই সরকারের লক্ষ্য। শ্রী মোদী বলেন, উপকূলবর্তী এলাকার সুরক্ষা সংক্রান্ত কাজ শেষ হলে তা কার নিকোবর দ্বীপের সংরক্ষণে সাহায্য করবে। শিল্প প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান চালু হলে এই দ্বীপের যুবসম্প্রদায়ের দক্ষতার পাশাপাশি, ক্ষমতায়ন ঘটবে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। নিকোবর দ্বীপের যুবদের ক্রীড়া ক্ষেত্রে সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, অত্যাধুনিক ক্রীড়া কমপ্লেক্সটি তাঁদের ক্রীড়া নৈপুণ্যের বিকাশ ও মানোন্নয়নে ব্যাপক সাহায্য করবে। ভবিষ্যতে এ ধরণের আরও ক্রীড়া পরিকাঠামো গড়ে তোলা হবে বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার আন্দামান ও নিকোবর দ্বীপপুঞ্জের মানুষের জীবনযাপনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে কাজ করে চলেছে। এই দ্বীপপুঞ্জে স্বাস্থ্য পরিষেবা ব্যবস্থার সম্প্রসারণের কথাও তিনি বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। এই দ্বীপপুঞ্জের প্রাকৃতিক পরিবেশ ও স্থানীয় সংস্কৃতি সংরক্ষণের বিষয়টিকে বিবেচনায় রেখেই উন্নয়নমূলক কাজকর্ম গ্রহণ করা হবে বলে তিনি জানান। তিনি জানান, দেশে মৎস্যচাষ ক্ষেত্রকে আরও লাভজনক করে তুলতে সম্প্রতি ৭ হাজার কোটি টাকার সংস্থান করা হয়েছে। দেশের সমুদ্র সংলগ্ন এলাকাগুলি নীল বিপ্লবের কেন্দ্র হয়ে উঠতে পারে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন। সমুদ্র লাগোয়া অঞ্চলগুলিতে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি উৎপাদনের বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। এ প্রসঙ্গে তিনি কার নিকোবর দ্বীপে যেসব প্রয়াস গ্রহণ করা হয়েছে, সে কথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, সমগ্র নিকোবর দ্বীপপুঞ্জ এবং নিকটবর্তী মালাক্কা প্রণালী সম্পদ ও নিরাপত্তা উভয় দিক থেকেই অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্পদ ও নিরাপত্তার বিষয়গুলিকে বিবেচনায় রেখেই সংশ্লিষ্ট অঞ্চলে পরিবহণ পরিকাঠামো গড়ে তোলা হচ্ছে। পরিকাঠামোর বিকাশ প্রসঙ্গে শ্রী মোদী ক্যাম্বেল বে জেটি ও মাস জেটিতে যে উন্নয়নমূলক কাজকর্ম চলছে, সেকথাও উল্লেখ করেন। ২০১৫ব্যাচের ইন্ডিয়ান পুলিশ সার্ভিস(আইপিএস)-এর আধিকারিকরা বৃহস্পতিবার এখানে দেখাকরেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বুধবারের (২৬ সেপ্টেম্বর) বৈঠকে ইন্সটিটিউট অফ চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টস অফ ইন্ডিয়া (আইসিএআই) এবং কেনিয়ার ইন্সটিটিউট অফ সার্টিফায়েড পাবলিক অ্যাকাউন্ট্যান্টস (আইসিপিএকে)-এর মধ্যে সমঝোতাপত্র বা মউ স্বাক্ষরের বিষয়টি অনুমোদিত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শুক্রবার তাঁর নয়াদিল্লির বাসভবনে স্বাগত জানান বারাণসীরকর্পোরেট ক্ষেত্রের কয়েকজন প্রতিনিধিকে। বারাণসী শহরটিকে পর্যটকদের কাছে আরও আকর্ষণীয় করে তোলার জন্য তাঁদের সহযোগিতা প্রার্থনা করেন তিনি। নিজেদের ওয়ার্ডগুলি যাতে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন থাকে সেদিকেও দৃষ্টি দিতে তিনি তাঁদের উৎসাহ দেন। বারাণসী সংসদীয় কেন্দ্রের গ্রাম প্রধান এবং কর্পোরেট প্রতিনিধিদের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর পাঁচদিনধরে যে আলোচনা ও মতবিনিময় চলছিল, এদিনই তার সমাপ্তি ঘটল। চিরাচরিত ওষুধ ও হোমিওপ্যাথির মাধ্যমে দুটি দেশের মধ্যে পারস্পরিক স্বার্থ অক্ষুণ্ন রেখে সহযোগিতার জন্য এই সমঝোতাপত্রটি সহায়ক হবে। চিরাচরিত ওষুধ ও হোমিওপ্যাথি চিকিৎসাকে বলিভিয়াতে জনপ্রিয় করা এবং সেখানে আয়ুষ (আয়ুর্বেদ, যোগ, ইউনানি, সিদ্ধা এবং হোমিওপ্যাথি) – এই ধরণের ওষুধের গুরুত্ব বোঝানো এই সমঝোতার অঙ্গ। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের বিশিষ্ট শিল্পপতি ও ব্যবসায়ীদের নিয়ে গঠিত আমেরিকা – ভারত কৌশলগত অংশীদারিত্ব ফোরামের বোর্ড সদস্যরা মঙ্গলবার (৩০শে অক্টোবর) নতুন দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। বোর্ড সদস্যরা ইন্ডিয়া লিডারশিপ সম্মেলনে গৃহীত সিদ্ধান্ত সম্পর্কে প্রধানমন্ত্রীকে অবহিত করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আর্থিক সহযোগিতার মাধ্যমে দুই দেশই ব্যাপক লাভবান হয়েছে। শ্রীনরেন্দ্র মোদি বলেন, দেশের প্রতিটি প্রান্তে সব বয়সী মানুষের কাছে এবং সমাজের সকলঅংশের মানুষের কাছে ডিজিট্যাল সাক্ষরতা ছড়িয়ে দেওয়ার কাজ চলছে| এইদিন ও যুগে আমরা ডিজিট্যাল বিভাজন করতে পারি না| ডিজিট্যাল ভারতের মধ্যে দিয়েস্বচ্ছতা, কার্যকর পরিষেবা প্রদান এবং সু-প্রশাসন সুনিশ্চিত হবে| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ গুজরাটের বস্ত্রলে প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মান – ধন প্রকল্পের (পিএম – এসওয়াইএম) সূচনা করেছেন। তিনি কয়েকজন সুফলভোগীর হাতে প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মান – ধন যোজনার পেনশন কার্ড তুলে দেন। আজকের দিনটিকে ঐতিহাসিক আখ্যা দিয়ে প্রধানমন্ত্রী দেশের অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত ৪২ কোটি শ্রমিকের স্বার্থে প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মান – ধন যোজনা উৎসর্গ করেন। তিনি বলেন, অসংগঠিত ক্ষেত্রে নাম নথিভুক্ত রয়েছে, এমন শ্রমিকরা বয়সকালে এই কর্মসূচির আওতায় মাসিক ৩ হাজার টাকার পেনশন পাবেন। স্বাধীনতার পর এই প্রথমবার অপ্রচলিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত কোটি কোটি শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের স্বার্থ পূরণেই কর্মসূচিটি গ্রহণ করা হয়েছে বলে শ্রী মোদী উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মান – ধন যোজনার সুফলগুলি সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেন। তিনি জানান, এই প্রকল্পের সুফলভোগী প্রিমিয়াম হিসাবে যে পরিমাণ অর্থ জমা করবেন, কেন্দ্রীয় সরকারের পক্ষ থেকেও সমপরিমাণ অর্থ দেওয়া হবে। নিকটবর্তী অভিন্ন পরিষেবা কেন্দ্রগুলিতে মাসিক ১৫ হাজার টাকার কম উপার্জনকারী অপ্রচলিত ক্ষেত্রের সঙ্গে যুক্ত শ্রমিকদের সুফল গ্রহণ করার জন্য নাম নথিভুক্ত করার জন্যও তিনি আহ্বান জানান। নাম নথিভুক্তিকরণ প্রক্রিয়ায় কোনও রকম সমস্যা হবে না বলে আশ্বাস দিয়ে শ্রী মোদী জনসভায় বলেন যে, এর জন্য কেবল আধার নম্বর ও ব্যাঙ্কের বিবরণ সহ একটি ফর্ম পূরণ করতে হবে। উপভোক্তার নাম নথিভুক্তিকরণের জন্য অভিন্ন পরিষেবা কেন্দ্রগুলিতে যে খরচ হবে, সেই খরচ কেন্দ্রীয় সরকার বহন করবে বলেও তিনি জানান। প্রধানমন্ত্রী সমগ্র এই প্রক্রিয়াকে ‘ডিজিটাল ভারতের বিস্ময়’ বলে বর্ণনা করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মান – ধন যোজনায় অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের নাম নথিভুক্তিকরণে সাহায্য করার জন্য শ্রী মোদী সাধারণ মানুষের প্রতি আহ্বান জানান। কোনও বাড়ি বা প্রতিবেশীদের জন্য সমাজের উচ্চ বর্গের মানুষের এই সাহায্যের ফলে গরিব মানুষ বিশেষভাবে উপকৃত হবেন। শ্রমিক শ্রেণীর প্রতি সম্মান জানানো গেলেই দেশ এগিয়ে যাবে বলে শ্রী মোদী অভিমত প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার আয়ুষ্মান ভারত, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষা বিমা যোজনা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা, উজ্জ্বলা যোজনা, সৌভাগ্য যোজনা এবং স্বচ্ছ ভারতের মতো উদ্যোগগুলি অসংগঠিত ক্ষেত্রে কর্মরত শ্রমিক শ্রেণীর মানুষের স্বার্থেই শুরু করেছে। দেশে মহিলাদের ক্ষমতায়ন ও শিশুকন্যাদের কল্যাণে সরকার যে সমস্ত উদ্যোগ গ্রহণ করেছে, প্রধানমন্ত্রী সেকথাও উল্লেখ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রম যোগী মান – ধন যোজনার বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধার পাশাপাশি, আয়ুষ্মান ভারত কর্মসূচির আওতায় স্বাস্থ্য বিমা, প্রধানমন্ত্রী জীবন জ্যোতি বিমা যোজনার আওতায় জীবন তথা কর্মক্ষমতা হারালে বিশেষ সুবিধা প্রদানের মতো উদ্যোগগুলি অসংগঠিত ক্ষেত্রের শ্রমিকদের বয়সকালে নিশ্চিত সামাজিক সুরক্ষা প্রদান করবে। দুর্নীতির বিরুদ্ধে তাঁর কঠোর অবস্থানের কথা পুনরায় উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, বর্তমান কেন্দ্রীয় সরকার দালালদের অযাচিত হস্তক্ষেপ ও দুর্নীতি চিরতরে দূরীকরণে অঙ্গীকারবদ্ধ। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মধ্যপ্রদেশের সাতনায় সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে শোক প্রকাশ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি নতুন চান্দ্র বৎসর উদযাপন উপলক্ষে চিন,কোরিয়া, মঙ্গোলিয়া এবং ভিয়েতনামের জনগণকে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। সোমবার ট্যুইট বার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “সারা বিশ্বের চিনা বন্ধুদের জানাই শুভ নববর্ষের আনন্দ ও শুভেচ্ছা। বাঁনরের বৎসর আপনাদের জীবনে নিয়ে আসুক আনন্দ ও সমৃদ্ধি। প্রিয় কোরিয়ান বন্ধুরা, আপনাদের সবাইকে জানাই‘সিওলাল’ শুভেচ্ছা। সামনের বছরটি হয়ে উঠুক মহান। মঙ্গোলিয়ার অপূর্ব জনগণের প্রতি জানাই আনন্দময় ‘সাগান সার’। আনন্দ,সুস্বাস্থ্য এবং সমৃদ্ধিতে পরিপূর্ণ বৎসরের জন্য প্রার্থনা করি। ভিয়েৎনামের জনগণকে জানাই‘তেত’ শুভেচ্ছা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীকে অবহিত করা হয় ঐ চুক্তিগুলির খুঁটিনাটি বিষয়ে। পুলিশের মহানির্দেশকদের তিনদিনের সম্মেলনের দ্বিতীয় দিন অর্থাৎ শনিবার, প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী উপস্থিত ছিলেন বিভিন্ন বিষয়ের ওপর আলোচনার জন্য অনুষ্ঠিত অধিবেশনগুলিতে। এর আগে ঐদিন সকালে সম্মেলনের প্রতিনিধিদের সঙ্গে তিনি অংশগ্রহণ করেন যোগ অধিবেশনে। প্রধানমন্ত্রী সূর্যোদয় দেখেন হোয়াইট রান থেকে। একবার্তায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, “কোকরাঝাড়ে আক্রমণ ও হামলার ঘটনায় আমি মর্মাহত। এইঘটনার আমি কঠোর নিন্দা করি। নিহতদের শোকসন্তপ্ত পরিবার এবং আহতদের জন্য রইল আমারউদ্বেগ ও প্রার্থনা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয়মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ অধস্তন বিচার বিভাগের জন্য দ্বিতীয় জাতীয় বিচার বিভাগীয় বেতনকমিশন নিয়োগ অনুমোদিত হয়েছে। সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি শ্রী জে পিভেঙ্কটরামা রেড্ডি এই কমিশনের নেতৃত্বে থাকবেন। কেরল হাইকোর্টের প্রাক্তন বিচারপতিশ্রী আর বসন্ত এই কমিশনের সদস্য হবেন। কমিশন রাজ্য সরকারগুলিকে তার সুপারিশ আগামী ১৮মাসের মধ্যেই জানিয়ে দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী নতুন দিল্লিতে মঙ্গলবার (৫ জুন) বিশ্ব পরিবেশ দিবস উপলক্ষে আয়োজিত অনুষ্ঠানে ভাষণ দেবেন। এই উপলক্ষে তিনি রাজপথ লন-এ আয়োজিত এক প্রদর্শনীও ঘুরে দেখবেন। এ বছর বিশ্ব পরিবেশ দিবসের মূল বিষয় প্লাস্টিক দূষণকে নিয়ন্ত্রণ করা। মাননীয় প্রেসিডেন্ট মিশেল টেমার, সংবাদ মাধ্যমের সদস্যবৃন্দ এবং বন্ধুগণ, ভৌগোলিক দিক থেকে ব্রাজিল ও ভারত দুটি বিচ্ছিন্ন দেশহলেও গণতন্ত্রের সাধারণ মূল্যবোধ, আইনের শাসন, উন্নয়নের আকাঙ্ক্ষা এবং শান্তি ওসমৃদ্ধির ক্ষেত্রে আমরা পরস্পরের স্বাভাবিক সহযোগী ও অংশীদার। তাঁর এই সফর অনুষ্ঠিত হচ্ছে এমন এক সময়ে যখন আমাদের দুটিদেশ কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্কের এক দশক পূর্ণ করেছে। এই দশ বছরে বিশেষপরিবর্তন ঘটে গেছে সমগ্র বিশ্বে। ভারত ও ব্রাজিলের দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক উত্তরোত্তরউন্নত হয়ে উঠেছে। সমস্ত পর্যায়েই বৃদ্ধি পেয়েছে আমাদের আলাপ-আলোচনা। আন্তর্জাতিকপ্রেক্ষাপটে আমাদের সাধারণ প্রচেষ্টা ও লক্ষ্যগুলির অনুসরণেসহযোগিতার মধ্য দিয়েযুক্ত হয়েছি আমরা। ব্রাজিলের বন্ধুদের ভারতের প্রতি গভীর টানের কথা তখনই আমি অনুভবকরেছিলাম। আজ সকালে আমাদের সফল আলোচনাতেই তা প্রমাণিত। আমাদের কৌশলগত অংশীদারিত্বের সম্পর্ক আরও জোরদার করে তোলার পারস্পরিকসদিচ্ছাই তাতে প্রতিফলিত হয়েছে। লাতিন আমেরিকায় আমাদের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণঅর্থনৈতিক অংশীদারদেশগুলির অন্যতম হল ব্রাজিল। আমি একথা ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিতযে দ্বিপাক্ষিক বিনিয়োগ চুক্তির বিষয়টি চূড়ান্ত করেছে আমাদের এই দুটি দেশ। পারস্পরিকবাণিজ্য ও বিনিয়োগের সম্পর্কে তা আরও এক উন্নত মাত্রা যোগ করবে। ব্রাজিলের নিজস্বঅর্থনৈতিক কার্যসূচির পুনরুদ্ধারের বিষয়টিকে প্রেসিডেন্ট টেমার অগ্রাধিকার দিয়েছেনএকথা আমরা জানতে পেরেছি। তাঁর এই প্রচেষ্টায় ভারত এক মূল্যবান সহযোগীর ভূমিকা পালনকরতে পারে। ভারতে এসে দীর্ঘমেয়াদি বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে তোলার জন্যব্রাজিলের শিল্প সংস্থাগুলিকে আমি স্বাগত জানাই। আমাদের দু’দেশের সিইও-দের কাছথেকে সরাসরি তাঁদের বক্তব্য শোনার জন্য প্রেসিডেন্ট টেমার এবং আমি আজ মিলিতহয়েছিলাম তাঁদের সঙ্গে। আমরাসমস্তরকমভাবে সহযোগিতা যুগিয়ে যাব তাঁদের এই উদ্যোগ ও প্রচেষ্টায়। ভারতীয়সংস্থা এবং এখানকার উৎপাদনের যাতে ভালো বাজার সৃষ্টি করা যায় এবং বিনিয়োগের সুযোগপ্রসারিত করা যায়, সেজন্য আমি সমর্থন প্রত্যাশা করিপ্রেসিডেন্ট টেমারের কাছ থেকে। এই বিষয়টিতে প্রেসিডেন্ট টেমার ইতিবাচক মনোভাবদেখানোয় আমি ধন্যবাদ জানাই তাঁকে। তাঁর এই সফরকালে ওষুধপত্রের মান নিয়ন্ত্রণ, কৃষিগবেষণা এবং সাইবার নিরাপত্তা সহ সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলিতে সহযোগিতার নতুন নতুন ক্ষেত্রউন্মুক্ত করার কাজেও আমরা অনেকটা এগিয়ে গিয়েছি। গুরুত্বপূর্ণ আন্তর্জাতিকমঞ্চগুলিতে আমাদের সহযোগিতা ও সমন্বয়কে আরও গভীর ও শক্তিশালী করে তুলতে সম্মতহয়েছি প্রেসিডেন্ট টেমার এবং আমি। পরিস্থিতি এবং দৃষ্টিভঙ্গির অনেকগুলি ক্ষেত্রেইমিল রয়েছে আমাদের মধ্যে। রাষ্ট্রসঙ্ঘ, জি-২০, জি-৪ ডব্ল্যুটিও, আইবিএসএ এবংঅন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ মঞ্চে আমরা পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগ রেখে কাজ করেযাব। সন্ত্রাসদমনে ভারতের প্রচেষ্টাকে ব্রাজিল সমর্থন জানানোয় তাঁদের এই ভূমিকার প্রশংসা করিআমি। পরমাণু সরবরাহকারী গোষ্ঠীর সদস্যপদলাভের জন্য ভারতের আকাঙ্ক্ষার বিষয়টিকে ব্রাজিল উপলব্ধি করায় ধন্যবাদ জানাই মাননীয়প্রেসিডেন্টকে। মাননীয়প্রেসিডেন্ট এবং বন্ধুগণ, দ্বিপাক্ষিকএবং বহুপাক্ষিক দিক থেকে ভারত ও ব্রাজিলের সহযোগিতার সম্পর্ক প্রচুর সম্ভাবনাময়।এই সুযোগের পুরোপুরি সদ্ব্যবহার আমাদের সম্ভব করে তুলতে হবে। প্রেসিডেন্ট টেমারেরসফর আমাদের এই লক্ষ্য পূরণের পথে একটি গুরুত্বপূর্ণ ঘটনা সন্দেহ নেই। ব্রিটিশ সাংসদদেরএক প্রতিনিধিদল আজ এখানে সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। ২০১৭ বছরটি ভারত-যুক্তরাজ্য সংস্কৃতিবর্ষ রূপে উদযাপনের ঘটনাকে স্বাগত জানান তিনি। প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ীর স্মরণে একটি প্রার্থনা সভায় তাঁর প্রতিশ্রদ্ধা জানালেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ঐ স্মরণ সভায় তিনি বলেন, জীবন আমাদের হাতে না থাকলেও আমরা কিন্তু আমাদের জীবন কিরকম হবে তা অনুধাবন করতে পারি। প্রধানমন্ত্রীর অভিমত, অটলজী তাঁর জীবন দিয়ে দেখিয়ে গিয়েছেন জীবন কিরকম হওয়া উচিৎ এবং জীবনের লক্ষ্য কি হওয়া উচিৎ। তিনি বলেন, সাধারণ মানুষের জন্য প্রত্যেকটি মূহুর্ত অতিবাহিত করেছিলেন অটলজী। প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন বাজপেয়ীজী এমন একটা সময় তাঁর রাজনৈতিক জীবনের অধিকাংশ সময় কাটিয়েছিলেন যখন কার্যত প্রবল রাজনৈতিক ভাবাদর্শের কোনও বিকল্প ছিল না। তিনি আরও বলেন, একাকীকত্বর মুখেও তিনি তাঁর আদর্শে ছিলেন স্থিতধী। শ্রী মোদীর অভিমত, বাজপেয়ীজী সংসদীয় রীতিকে সম্মান করতেন এবং যখন তিনি সুযোগ পেলেন তখন তিনি তাঁর দর্শন রূপায়ণ করেন মানুষের হিতার্থে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, প্রত্যেক মুহূর্তেই তাঁর মধ্যে অটলত্ব অনুধাবন করা যেত। ১৯৯৮ সালের ১১ মে অটলজী বিশ্বকে অবাক করে দিয়ে পারমাণবিক পরীক্ষা করালেন। অটলজী এই সফল পরীক্ষণের কৃতিত্ব দিলেন দেশের বৈজ্ঞানিকদের। এর প্রেক্ষিতে বিশ্ব জুড়ে তীব্র প্রতিক্রিয়া হলেও অটলজী কোনও রকম চাপের মুখে নতি স্বীকার করেননি, বরং বিশ্বকে দেখিয়েছেন ভারত ‘অটল’। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বাজপেয়ীজীর নেতৃত্বে কোনও তিক্ততা ছাড়াই তিনটি নতুন রাজ্যের সূচনা হয়। কি করে সবাইকে সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় শরিক করা যায় বাজপেয়ীজী তা দেখিয়েছিলেন বলে প্রধানমন্ত্রী উল্লেখ করেন। শ্রী মোদী সেই ঘটনাটির কথাও স্মরণ করেন, যখন কেন্দ্রে সরকার গঠনের ১৩ দিনের মাথায় সমর্থনের অভাবে ভেঙে যায়। প্রধানমন্ত্রীর ভাষায়, অটলজী তখনও আশা ছাড়েননি, বরং মানুষের সেবায় নিজেকে সমর্পণ করেছিলেন। জোট রাজনীতি যখন এল তখন অটলজী পথ দেখিয়েছিলেন। শ্রী মোদী বলেন, কাশ্মীর প্রসঙ্গে বিশ্বব্যাপী ব্যাখ্যার পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন অটলজী। অটলজী সন্ত্রাসবাদ বিষয়টিকে জোরালো ভাষায় তুলে ধরেছিলেন এবং বিষয়টিকে রাজনৈতিক ভাবনাচিন্তার কেন্দ্রস্থলে এনে দিয়েছিলেন। পরিশেষে, প্রধানমন্ত্রীর অভিমত, অটলজী অনুপ্রেরণার উৎস হিসাবে সকলের হৃদয়ে বিরাজ করছেন। প্রায় এক দশকের বেশি তিনি রাজনীতির বাইরে ছিলেন তবুও তাঁর মৃত্যুতে এতটাই আবেগ প্রত্যক্ষ করা গিয়েছে। এটি তাঁর মহত্বকেই তুলে ধরে। তিনি এ প্রসঙ্গে ভারতীয় কুস্তিগীর বজরং পুনিয়ার ভুয়সী প্রশংসা করে বলেন, অটলজীর সঙ্গে সাক্ষাৎ না হওয়া সত্ত্বেও এশিয়ান গেম্‌স-এ প্রাপ্ত সোনার পদকটি শ্রী পুনিয়া অটলজীকে উৎসর্গ করেছেন। “উত্তরাখণ্ডের কোন কোন অঞ্চলে মেঘ ভেঙে প্রবল বৃষ্টিপাতের কারণে প্রাণহানি ঘটেছে, এই খবরে আমি গভীরভাবে মর্মাহত। স্বজন হারা পরিবার-পরিজনদের জানাই আমার সমবেদনা। এই ঘটনায় যাঁরা আহত হয়েছেন তাঁর দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুন এই প্রার্থনা জানাই। পরবর্তীকালে ১৯৬৫ এবং১৯৭১-এ ভারত-পাকিস্তান যুদ্ধের সময় জম্মু ও কাশ্মীরের ছাম্ব নিয়াবত অঞ্চল থেকেউদ্বাস্তু রূপে প্রবেশ করে ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যে। “শ্রদ্ধেয় লোকনায়ক জয়প্রকাশজির জন্মজয়ন্তীতে আমার সশ্রদ্ধ প্রণতি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীবিহারে পথ-দুর্ঘটনায় প্রাণহানিতে শোকপ্রকাশ করেছেন । প্রধানমন্ত্রীবলেছেন “ বিহারের আরারিয়া-র কাছে পথ-দুর্ঘটনায় প্রাণহানির খবরেঅত্যন্ত দুঃখিত । নিহতের পরিবারবর্গের প্রতি রইল আমার সমবেদনা । পরিকল্পনার লক্ষ্য ভারতে বিপর্যয় প্রতিরোধী ব্যবস্থা গড়ে তোলা এবং প্রাণ ও সম্পত্তিহানির ঝুঁকি কমানো বিপর্যয় মোকাবিলা সম্পর্কিত জাতীয় পরিকল্পনাটি আজ এখানে প্রকাশ করলেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। দেশে এটি-ই হল বিপর্যয় মোকাবিলা সম্পর্কিত প্রথম জাতীয় পরিকল্পনা। পরিকল্পনার প্রধান প্রধান বৈশিষ্ট্য প্রতিরোধ, ঝুঁকি কমানো, বিপর্যয়ের মোকাবিলায় তৎপরতা বৃদ্ধি এবং উদ্ধার, ত্রাণ ও পুনর্গঠন সহ সবকটি বিষয়েই বিশেষভাবে নজর দেওয়া হয়েছে এই জাতীয় পরিকল্পনাটিতে। সরকারের সমস্ত দপ্তর ও সংস্থাকে এই কাজে একত্রিত ও জোটবদ্ধ করে তোলার কথাও বলা হয়েছে। জাতীয় পরিকল্পনাটির ছক এমনভাবে তৈরি করা হয়েছে, যাতে বিপর্যয়ের প্রতিটি স্তরেই তৎপরতার সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করা সম্ভব। পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠন সম্পর্কিত একটি সাধারণ কাঠামোও তৈরি করা হয়েছে এই পরিকল্পনায়, যাতে পরিস্থিতি যাচাই করে পুনরুদ্ধার ও পুনর্গঠনের কাজকে উন্নততর করে তোলা যায়। বিপর্যয় প্রতিরোধে সমাজের সকল স্তরের মানুষকে প্রস্তুত করে তুলতে তথ্য, শিক্ষা ও যোগাযোগ সম্পর্কিত কাজকর্মের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। ‘স্বচ্ছতাইসেবা’ অভিযানে দেশের বিশিষ্ট ব্যক্তি তথা বিভিন্ন গোষ্ঠীর ভূমিকা ও অবদানের ভূয়সীপ্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। “অনুপমজিরভূমিকা প্রশংসাযোগ্য। বিশিষ্টঅভিনেতা মোহনলাল দারুণ কাজ করেছেন। স্বচ্ছতাসম্পর্কে সচেতনতা প্রসারের লক্ষ্যে সক্রিয় পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য আমি প্রশংসা জানাই‘ইন্ডিয়া টুডে’ পরিবারকে। সাফাইগিরি পুরস্কারে যাঁরা সম্মানিত হয়েছেন তাঁদেরওঅভিনন্দন জানাই। চমৎকারউদ্যোগ গ্রহণ করেছে ইন্ডিয়া টিভি নিউজ। এর ফলে, দেশে পরিচ্ছন্নতার বার্তা আরওপ্রসার লাভ করবে। গান্ধী জয়ন্তীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর বিভিন্ন কর্মসূচির মধ্যে স্বচ্ছতা এবং পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি সংক্রান্ত বিষয়গুলি বিশেষ গুরুত্ব পাবে। এরপর, তিনি বিজয়ঘাটে গিয়ে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী লাল বাহাদুর শাস্ত্রীর জন্মবাষির্কীতে তাঁকে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানাবেন। রাষ্ট্রপতি ভবনের সংস্কৃতি কেন্দ্রে আয়োজিত মহাত্মা গান্ধী আন্তর্জাতিক পরিচ্ছন্নতা সম্মেলনের সমাপ্তি অনুষ্ঠানে শ্রী মোদী উপস্হিত থাকবেন। চারদিনের এই আন্তর্জাতিক সম্মেলনে বিভিন্ন দেশের পরিচ্ছন্নতা বিষয়ক মন্ত্রী এবং অন্যান্য বিশ্ব নেতৃবৃন্দ অংশ নেবেন। এই সম্মেলন উপলক্ষ্যে আয়োজিত একটি ডিজিটাল প্রদর্শনী তিনি ঘুরে দেখবেন। তাঁর সঙ্গে থাকবেন রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব শ্রী অ্যান্টোনিও গুটারেস। অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে বিশিষ্ট ব্যক্তিরা মহাত্মা গান্ধীকে নিয়ে একটি স্মারক ডাকটিকিট এবং গান্ধীর সবচেয়ে প্রিয় ভজন সংকীর্তন- ‘বৈষ্ণব জন তো’ ভিত্তিক একটি সিডি’র আনুষ্ঠানিক প্রকাশ করবেন। এই উপলক্ষ্যে স্বচ্ছ ভারত পুরস্কার প্রদান করা হবে। সমাবেশে প্রধানমন্ত্রী ভাষন দেবেন। পরে, প্রধানমন্ত্রী বিজ্ঞান ভবনে আন্তর্জাতিক সৌর জোটের প্রথম সভার উদ্ভাবন করবেন। একইসঙ্গে পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি মন্ত্রীদের দ্বিতীয় আইওআরএ বৈঠক এবং দ্বিতীয় বিশ্ব রি-ইনভেস্ট বা পুনর্নবীকরণযোগ্য শক্তি ক্ষেত্রের বিনিয়োগকারিদের সম্মেলন ও প্রদর্শনীরও সূচনা হবে। রাষ্ট্রসঙ্ঘের মহাসচিব শ্রী অ্যান্টোনিও গুটারেস এই অনুষ্ঠানে উপস্হিত থাকবেন। “ভারতকে ঐক্যবদ্ধ করার কাজে – সর্দার প্যাটেল”শীর্ষক একটি প্রদর্শনী বৃহস্পতিবার পরীক্ষামূলকভাবে পর্যালোচনা করেন প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদী । প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি বুধবার ওন্টারিও’র প্রধানমন্ত্রী শ্রীমতি ক্যাথলিন ওয়াইনে এবং কানাডার প্রিন্স এডোয়ার্ড দ্বীপের প্রধানমন্ত্রী শ্রী এইচ. ওয়াডে ম্যাকলক্ল্যান-এর নেতৃত্বে এক প্রতিনিধি দলকে স্বাগত জানান| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ও মার্কিন রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প গতসন্ধ্যায় টেলিফোনে বার্তালাপের সময় পরস্পরকে নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। ২০১৮-তে ভারত-মার্কিন কৌশলগত অংশীদারিত্বে অগ্রগতির ব্যাপারে উভয় নেতাই সন্তোষ প্রকাশ করেন। দুই শীর্ষ নেতাই সদ্য শুরু হওয়া ২+২ আলোচনা এবং প্রথমবার জাপানকে সঙ্গে নিয়ে ত্রিস্তরীয় শীর্ষ বৈঠক আয়োজনের প্রয়াসের প্রশংসা করেন। ভারত-মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের মধ্যে প্রতিরক্ষা, সন্ত্রাস দমন ও শক্তিক্ষেত্র সহ আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক বিভিন্ন বিষয়ে দ্বিপাক্ষিক সহযোগিতা বৃদ্ধির ব্যাপারে উভয় নেতা ইতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন , সুফি সন্তরা যে আদর্শের বাণী উচ্চারণ করেছিলেন তা ভারতীয় ধ্যান-ধারণার অবিচ্ছেদ্য অংশ এবং এই বাণী ভারতে একটি বহুত্ববাদী, মিশ্র-সংস্কৃতির সমাজ গঠনে তাৎপর্যময় অবদান রেখেছে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী দেশের বিভিন্ন প্রান্তের ৪০ জন বেয়ারলুই সুফি বুদ্ধিজীবিদের এক প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকের সময় বলেন, উগ্রপন্থার শক্তি আজ সুফি আদর্শকে দুর্বল করতে উদ্যত । তিনি আরো বলেন, সোস্যাল মিডিয়া সহ বিভিন্ন পন্থার মাধ্যমে এই শক্তির মোকাবিলা করার জন্য সুফি সন্ত ও পন্ডিতদের অত্যন্ত প্রয়োজন, তাহলেই উগ্রপন্থার আদর্শ ভারতের মাটিতে শেকড় গাড়তে পারবে না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সুফি মতবাদের ঐতিহ্য যেখানেই বিকশিত হয়েছে সেখানেই তা অশুভ শক্তিকে অপসৃত করতে সমর্থ হয়েছে। তিনি ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের দ্বারা প্রচলিত দক্ষতা বিকাশ প্রকল্প ও কর্মসূচির পূর্ণ সুযোগ গ্রহনের জন্য বিশেষ অনুরোধ রাখেন। তিনি প্রতিনিধি দলটিকে আশ্বস্ত করে বলেন, ওয়াকফ-এর সম্পত্তি সম্পর্কে তাঁরা যে সব প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন সে বিষয়ে নজর দেওয়া হবে। তিনি বলেন, প্রতিটি রাজ্যে সুফি সংস্কৃতি ও সঙ্গীতের যথাযথ প্রসার ঘটানো উচিত। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে মতামত বিনিময়ের সময় সুফি প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, ইসলাম কখনোই ঘৃণা বা উগ্রপন্থার বাণী প্রচার করে না। নির্দিষ্ট কিছু শক্তি যে ভারতের মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর সুসম্পর্ক বজায় রাখতে চায় না সে সম্পর্কে উদ্বেগ প্রকাশ করে তাঁরা বলেন, ভোট-ব্যাঙ্ক নির্ভর বিভেদকামী রাজনীতি সরকারের সঙ্গে মুসলিম সম্প্রদায়ের মতবিনিময়কে শুধু মাত্র মধ্যস্থতাকারীদের মাধ্যমে চালনা করতে চেয়েছে এতদিন; কিন্তু এখন তাঁরা চান মুসলিম সম্প্রদায় সহ ভারতের সব অংশের জনগণের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রী সরাসরি যোগাযোগ করুন। জাত-পাত, সম্প্রদায় ও ধর্ম নির্বিশেষে জনগণের কল্যাণ সাধনে কাজ করতে প্রধানমন্ত্রীকে অনুরোধ জানিয়েছেন তাঁরা। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা বলেন, ইসলামের নামে সন্ত্রাসবাদের প্রসার সারা বিশ্ব জুড়ে শান্তি রক্ষার সামনে বিপদ হয়ে দেখা দিয়েছে, এবং এজন্যই সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক দিক থেকে যারা “জিহাদ”-কে মদত দিচ্ছে সেই সব শক্তিকে খর্ব করতে ব্যবস্থা গ্রহণের আশু প্রয়োজন দেখা দিয়েছে। তাঁরা আরো বলেন, মুসলিম সম্প্রদায়ের মধ্যে এই সচেতনতা বৃদ্ধিরও প্রয়োজন দেখা দিয়েছে যে, আই এস আই এস এবং আল-কায়েদার মতো সংগঠনগুলি কোনভাবেই ইসলামের আদর্শের প্রতিনিধিত্ব করে না। প্রতিনিধি দলের সদস্যরা ভারতে সুফি ভাবধারা এবং সংস্কৃতির উন্নতি বিধানে বেশ কিছু পরামর্শ ও প্রস্তাব দিয়েছেন। নতুন বছরের এই সাফল্যটি দেশের মহাকাশ প্রযুক্তির দ্রুত অগ্রগতিরসুফলগুলি পৌঁছে দেবে আমাদের কৃষিজীবী, মৎস্যজীবী এবং নাগরিকদের কাছে। ইসরো’র পক্ষথেকে এই শততম উপগ্রহ উৎক্ষেপণের ঘটনা ভারতের গৌরবজনক সাফল্য এবং দেশের মহাকাশকর্মসূচির উজ্জ্বল ভবিষ্যৎকেই সূচিত করে। ভারতের সাফল্যের এই সুফলের অংশীদার আমাদের সহযোগী দেশগুলিও। মার্কিন প্রেসিডেন্ট মিঃ বারাক ওবামা আয়োজিত নৈশভোজের অনুষ্ঠানে পরমাণু শক্তির ক্ষেত্রে হুমকির প্রসঙ্গ উত্থাপন করলেন ভারতের প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। ব্রাসেল্‌স-এ সাম্প্রতিক সন্ত্রাসবাদী হামলার কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পরমাণু নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সন্ত্রাসবাদীদের হুমকি কতটা বাস্তব ও ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে ব্রাসেল্‌স-এর এই ঘটনাই তার প্রমাণ। শ্রী মোদী বলেন, সন্ত্রাস প্রতিরোধ এবং সন্ত্রাসবাদীদের আটক ও সাজার ব্যবস্থা যদি না করা যায়, তাহলে পরমাণু সন্ত্রাসের ঘটনা কোনদিনই হ্রাস পাবে না। তাই, বিশ্বের সবক’টি জাতির উচিত সন্ত্রাসকে অন্যের সমস্যা বলে এড়িয়ে যাওয়ার প্রবণতা থেকে দূরে থাকা। বাদলঅধিবেশন : সংসদের সময়সূচি, সহায়সম্পদ এবং মর্যাদারপ্রতি শ্রদ্ধা ও সম্ভ্রম · সংসদের বাদল অধিবেশন আগামীকাল শুরু হতে চলেছে। এই মুহূর্তে সর্বাপেক্ষাযা জরুরি তা হল অধিবেশনের সময়কালকে সর্বোচ্চ মাত্রায় কাজে লাগানো। এই প্রক্রিয়ায় সবক’টিরাজনৈতিক দলের সহযোগিতা অবশ্য প্রয়োজন। জিএসটি-র জন্য ধন্যবাদ · জিএসটি-র বাস্তবায়নে মিলিতভাবে সহযোগিতার জন্য আমি আরও একবার আমারকৃতজ্ঞতা জানাই আপনাদের সকলের কাছে। অনেক রাজ্যের সীমানা থেকেইচেক পোস্ট ব্যবস্থার বিলোপ ঘটানো হয়েছে। ফলে, ট্রাক চলাচলের বিষয়টি এখন আরও সহজহয়ে উঠেছে। · যে সমস্ত ব্যবসায়ী এখনও জিএসটি-র মঞ্চে নথিভুক্তির উদ্যোগ গ্রহণ করেননি,তাঁদের এর আওতায় অনতিবিলম্বে নিয়ে আসার জন্য প্রক্রিয়াকরণের কাজ দ্রুততর করে তুলতেকেন্দ্র ঘনিষ্ঠ সমন্বয়সাধনের মাধ্যমে মিলিতভাবে কাজ করে চলেছে রাজ্যগুলির সঙ্গে। বাজেট অধিবেশনের ফলাফল · প্রায় এক মাস আগে বাজেট অধিবেশন আহ্বান করা হয়। সবক’টি রাজনৈতিক দলইসেখানে সহযোগিতার মনোভাব দেখিয়েছিল। বাজেট অধিবেশনের ইতিবাচক ফলগুলি আমি এখানেতুলে ধরতে আগ্রহী। · বাজেট প্রক্রিয়ার কাজকে আরও এক মাস এগিয়ে নিয়ে আসার ফলে যে গুরুত্বপূর্ণসাফল্য অর্জিত হয়েছে তা হল, বিভিন্ন কর্মসূচির জন্য দপ্তরগুলিতে বাজেট বরাদ্দেরঅর্থ বাদল অধিবেশনের পূর্বেই পৌঁছে দেওয়া সম্ভব হয়েছে। অতীতে বিভিন্ন কর্মসূচিরজন্য বাজেট বরাদ্দ দপ্তরগুলির কাছে পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে দু থেকে তিন মাসের মতোবিলম্ব ঘটত। এর ফলে বর্ষার কারণে কর্মসূচি রূপায়ণের কাজ হত বিলম্বিত। কিন্তু এবারঐ ঘটনার পুনরাবৃত্তি ঘটেনি। মার্চের পর কোন সময়ই এবার কোনভাবেই নষ্ট হয়নি।পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির কাজ সম্পূর্ণ করার জন্য অতিরিক্ত সময় দেওয়া হয়েছে আরও তিনমাস। · কন্ট্রোলার জেনারেল অফ অ্যাকাউন্টস-এর কাছ থেকে প্রাপ্ত তথ্য অনুযায়ী গতবছরের সমতুল সময়কালের তুলনায়এ বছর এপ্রিল থেকে জুন মাস পর্যন্ত ব্যয়ের মাত্রাবৃদ্ধি পেয়েছে ৩০ শতাংশ বেশি। · পরিকাঠামো সম্পর্কিত প্রকল্পগুলিতে মূলধনী ব্যয়ের পরিমাণ গত বছরের তুলনায়বৃদ্ধি পেয়েছে ৪৮ শতাংশের মতো। · বিভিন্ন কর্মসূচি রূপায়ণে ব্যয়ের মাত্রা থেকে এটাই প্রতিফলিত হয়েছে যেবরাদ্দকৃত অর্থের সুষম ব্যবহার সম্ভব হবে সারা বছর ধরেই। অতীতে শুধুমাত্র বর্ষারপরেই কর্মসূচি রূপায়ণে অর্থ ব্যয় করা হত। অথচ, অপ্রয়োজনীয় চাপ সৃষ্টি করা হতমার্চেরআগেই বরাদ্দকৃত অর্থ শেষ করার জন্য।সার্বিক ব্যবস্থায় ত্রুটি বা গলদের এটিও ছিলঅন্যতম এক কারণ। উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় রাজ্যগুলিতে বন্যাপরিস্থিতি · দেশের বিভিন্ন প্রান্তে অবিশ্রান্ত বর্ষণ এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয়রাজ্যগুলির বন্যা পরিস্থিতি বিশেষ উদ্বেগের বিষয় হয়ে উঠেছে। বন্যা ত্রাণ ও উদ্ধারের কাজে নিয়োগ করা হয়েছে কেন্দ্রীয়সরকারি বিভিন্ন এজেন্সিকে। কোনরকম সাহায্য ও সহায়তার প্রয়োজন হলে তা সঙ্গে সঙ্গেজানানোর জন্য বলা হয়েছে রাজ্য সরকারগুলিকে। এই আক্রমণের সঙ্গে যারা যুক্ত তারা যাতেকোনভাবেই যাতে রেহাই না পায় তা নিশ্চিত করতে সরকার বদ্ধপরিকর। · জম্মু ও কাশ্মীরে শান্তি রক্ষার কাজে আমরা সম্পূর্ণভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ।জাতি বিরোধী কার্যকলাপকে এই রাজ্য থেকে নির্মূল করার লক্ষ্যেও আমরাপ্রতিশ্রুতিবদ্ধ। অটলজির প্রদর্শিত পথ অনুসরণ করে চলেছে বর্তমান সরকার। গো-রক্ষার নামে যারা হিংসায় ইন্ধনযোগাচ্ছে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ রাজ্য সরকারগুলির · কিন্তু এই ধরনের ঘটনা জাতির ভাবমূর্তিতে আঘাত ঘটাচ্ছে। তাই, এই সমস্তসমাজ বিরোধীদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিৎ রাজ্য সরকারগুলির। · আমাদের দেশে গরুকে আমরা গো-মাতা বলে শ্রদ্ধা ও সম্মান করি। এর সঙ্গেসাধারণ মানুষের আবেগও যুক্ত থাকে। · গো-রক্ষার নামে এই ধরনের গুণ্ডামিকে কঠোরভাবে নিন্দা করার জন্য এগিয়ে আসাউচিৎ সবক’টি রাজনৈতিক দলেরই। দুর্নীতির বিরুদ্ধে পদক্ষেপ · গত কয়েক দশকে দেশের কয়েকজন নেতার কাজকর্মের ফলে রাজনৈতিক নেতৃত্বেরভাবমূর্তি এক কঠিন পরীক্ষার সম্মুখীন। এই পরিস্থিতিতে আমাদের উচিৎ জনসাধারণেরমধ্যে এই আস্থা ও বিশ্বাস জাগিয়ে তোলা যে সব নেতাই কিন্তু প্রলোভনের শিকার নন এবংতাঁদের প্রত্যেকেই অর্থের জন্য লালায়িত নন। · জনজীবনে আমাদের সর্বদা প্রতিটি কাজেই স্বচ্ছতা রক্ষা করা প্রয়োজন।প্রয়োজনে যে সমস্ত নেতা দুর্নীতি পরায়ণ, তাঁদের বিরুদ্ধে অবশ্যই কঠোর ব্যবস্থাগ্রহণ করতে হবে। · দলের মধ্যে এই ধরনের নেতাদের চিহ্নিত করার দায়িত্ব রাজনৈতিক দলগুলিরই।রাজনৈতিক যাত্রাপথে এই ধরনের দুর্নীতি পরায়ণ নেতাদের সর্বতোভাবে এড়িয়ে চলতে হবে। · দেশের আইনকে যদি সফল করে তুলতে হয়, তাহলে আমাদের সকলকে মিলিতভাবে চেষ্টাকরতে হবে রাজনৈতিক ষড়যন্ত্রের আড়ালে যাঁরা নিজেদের লুকিয়ে রাখার চেষ্টা করেযাচ্ছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ গ্রহণের জন্য। · জাতিকে যারা নানাভাবে লুন্ঠন করে চলেছে, তাদের সমর্থন করলে দেশ কখনইলাভবান হবে না। · আগামী ৯ আগস্ট পূর্ণ হতে চলেছে ‘ভারত ছাড়ো’ আন্দোলনের ৭৫তম বর্ষ। সংসদেরআলোচ্যসূচিতে এই বিষয়টিকে অবশ্যই অন্তর্ভুক্ত করা উচিৎ। · সহমতের ভিত্তিতে যদি দেশের রাষ্ট্রপতি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হত, তাহলে তারথেকে ভালো আর বেশি কিছু হতে পারত না। তবে, গর্ব ও সন্তোষের বিষয় যে এই নির্বাচনেরপ্রচার ও অভিযানে যথেষ্ট মর্যাদা রক্ষা করা হয়েছে। এজন্য সবক’টি রাজনৈতিক দলকেইঅভিনন্দন। তিনি জিজ্ঞেস করেছেন, “আপনার কাছে কি দেশের উত্তর-পূর্বাঞ্চল সফরের সময় সেখানকার অসাধারণ প্রাকৃতিক সৌন্দর্য্যের ছবি তোলা আছে? প্রধানমন্ত্রী সকলকে সেই ছবি ইনস্টাগ্রামে ‘#ম্যাগনিফিসেন্ট নর্থ-ইস্ট’ শিরোনামে শেয়ার করার অনুরোধ জানিয়েছেন। আমরা বিশ্বাস করি যে বিশ্ব যত জটিলতর হয়ে উঠবে, ততই বৃদ্ধি পাবেবহু উদ্দেশ্যসাধক প্রাতিষ্ঠানিকতা। ১৯৪৪-এ ব্রেটন উড্‌স সম্মেলনে ভারত প্রতিনিধিত্ব করেছিল। সকল সদস্য রাষ্ট্রেরই উচিত এই সুযোগকে কাজে লাগানো। এক বৃহৎ অর্থনীতি গড়ে তুলতে,উন্নয়নকে এক নতুন মাত্রায় উন্নীত করতে এবং আরও বেশি করে অন্তর্ভুক্তির লক্ষ্যে আমাদের উচিত সুনির্দিষ্ট নীতিগুলিকে অনুসরণ করা। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডার এই কাজে এক বিশেষ সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে বলে উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের সঙ্গে ভারত, বাংলাদেশ, ভুটান, মালদ্বীপ, নেপাল ও শ্রীলঙ্কার এক নতুন অংশীদারিত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠেছে। দক্ষিণ এশীয় আঞ্চলিক প্রশিক্ষণ ও কারিগরি সহায়তাকেন্দ্র গড়ে তুলতে আমরা ঐক্যবদ্ধ হয়েছি। এই কেন্দ্রটির মাধ্যমে সরকারি ও রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার কর্মীদের প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে। শুধু তাই নয়, কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধিতে এবং নীতি রূপায়ণের ক্ষেত্রে গুণগত পরিবর্তন আনতেও এই কেন্দ্র এক বিশেষ ভূমিকা পালন করবে। বিভিন্ন সরকারি দপ্তর ও প্রতিষ্ঠানগুলি নানা ধরনের কারিগরি সহায়তা লাভ করবে এই কেন্দ্রটি থেকে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, জ্ঞানী ও বিদগ্ধজনের মতে একুশের শতক এশিয়ার শতকে রূপান্তরিত হতে চলেছে। পশ্চিমবঙ্গ, তামিলনাড়ু, গুজরাট এবং রাজস্থান – ভারতের এই চারটি বড় রাজ্যে বর্তমানে প্রশাসনের নেতৃত্বে রয়েছেন গণতান্ত্রিকভাবে নির্বাচিত একজন করে মহিলা। এমনকি, সংসদে লোকসভার অধ্যক্ষের আসনেও রয়েছেন একজন মহিলা। শ্রী মোদী বলেন, এশিয়ায় ভারত এক বিশেষ স্থানের অধিকারী। নানাভাবে এশিয়ার ইতিহাস সমৃদ্ধ হয়েছে ভারতের অবদানে। চিন, জাপান সহ দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার অন্যান্য প্রান্তে বৌদ্ধ ধর্মের প্রচার ও প্রসার লাভ করেছিল ভারত থেকেই। এই মহাদেশের সংস্কৃতিতেও ভারতের স্থায়ী প্রভাব অনস্বীকার্য। শুধু তাই নয়, জাতীয়তাবাদ যে কতটা উদার অথচ অন্তর্ভুক্তিমূলক হয়ে উঠতে পারে তাও প্রমাণ করেছে আমাদের দেশ। দেশকে ভাষা ও ধর্মের সংকীর্ণতার গণ্ডীতে আবদ্ধ রাখা ঠিক নয়। ‘বসুধৈব কুটুম্বকম’ – এই নীতিতে ভারত বিশ্বাসী। প্রধানমন্ত্রী বলেন, গণতন্ত্র ও অর্থনৈতিক গতিশীলতার মধ্যে যে কোন বিরোধ থাকতে পারে না সে কথা প্রমাণ করেছে ভারত। এ দেশে রয়েছে উজ্জ্বল ও প্রাণবন্ত একগণতন্ত্র যেখানে উন্নয়নের হার পরিলক্ষিত হয়েছে ৭ শতাংশেরও বেশি। অনেকেই হয়তো মনে করেন যে ভারতের পক্ষে গণতন্ত্র হল ঔপনিবেশকিতার দান। কিন্তু ঐতিহাসিকদের মতে, বহু শতাব্দী আগে বিশ্বের অন্যত্র যখন গণতন্ত্রের চিহ্নমাত্র ছিল না, তখনই গণতান্ত্রিক স্বশাসনের নজির সৃষ্টি করেছিল ভারত। বহু বৈচিত্র্যের একটি দেশ অর্থনৈতিক অগ্রগতি ও সামাজিক স্থিতিশীলতাকে যে কিভাবে সম্ভব করে তুলতে পারে ভারত তা প্রমাণ করে দিয়েছে। প্রতিযোগিতামূলক অথচ সহযোগিতাভিত্তিক যুক্তরাষ্ট্রীয়বাদের পথে অগ্রসর হয়ে আমরা সে কথা প্রমাণ করে দিয়েছি। সাধারণ লক্ষ্য ও উদ্দেশ্যগুলির চরিতার্থতায় অবদান রয়েছে কেন্দ্র ও রাজ্য উভয়েরই। যে সমস্ত রাজ্য ভালো নীতি অনুসরণের মাধ্যমে দরিদ্র সাধারণ মানুষের কাছে অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা পৌঁছে দেওয়ার কাজে সফল, তারা আদর্শ ও অনুসরণযোগ্য হয়ে রয়েছে অন্য রাজ্যগুলির কাছে। আমাদের সঙ্গে যারা অংশীদারিত্বের সম্পর্কে যুক্ত তাদের দানে আমরা কখনই লাভবান হতে চাই না। প্রতিবেশীকে নিঃস্ব করে দেওয়ার বৃহদায়তন অর্থনীতি আমরা অনুসরণ করে চলি না। মুদ্রার বিনিময় হারকেও আমরা কখনও তুচ্ছ করে দেখি না। আর এই কারণেই এশিয়ার একটি সৎ জাতি এবং বিশ্ব অর্থনীতির একজন ভালো অংশীদার হিসেবে আমাদের সুনাম ও সুখ্যাতি। শ্রী মোদী বলেন, এশিয়ার সাফল্যই আমরা কামনা করি। অর্থনৈতিক দিক থেকে শক্তিশালী হয়ে উঠলে এশিয়ার সমৃদ্ধিতে ভারত এক বিশেষ অবদান সৃষ্টি করতে পারে। আন্তর্জাতিক দুনিয়া যখন নানা ধরনের সমস্যায় জেরবার, তখন আমি একথা ঘোষণা করতে পেরে আনন্দিত যে বড় ধরনের অর্থনৈতিক কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে ভারত এক আলোকবর্তিকা বিশেষ। সম্ভাবনা ও গতিময়তার সমন্বয় ঘটেছে এখানে। বিশেষ সাফল্যও আমরা অর্জন করেছি আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার এই বিশেষ ক্ষেত্রটিতে। সন্তোষজনকভাবে মুদ্রাস্ফীতি হ্রাস, সফল আর্থিক সংহতি, লেনদেনজনিত অনুকূল পরিস্থিতি এবং বিদেশি মুদ্রার পর্যাপ্ত ভাণ্ডার আমাদের এই সাফল্যেরই পরিচয় বহন করে। এর ফলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণ এবং সরকারি ব্যয়ের সঠিক পরিচালন সম্ভব হয়ে উঠেছে। অর্থনীতির সবক’টি ক্ষেত্রকেই উন্মুক্ত করে দিয়েছি প্রত্যক্ষ বিদেশি বিনিয়োগের সুযোগ লাভের জন্য। বাণিজ্যিক কাজকর্মের ভালো স্থান হিসেবে ভারত বিশ্ব ব্যাঙ্কের র‍্যাঙ্কিং-এ এক বিশেষ উচ্চতায় পৌঁছে গেছে ২০১৫ সালে। কয়লা, বিদ্যুৎ, ইউরিয়া, সার এবং মোটর গাড়ি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারত যথেষ্ট উন্নয়ন ও সাফল্যের নিদর্শন দেখিয়েছে। দেশের প্রধান প্রধান বন্দরগুলিতে মালপত্র ওঠানো-নামানো, নতুন মহাসড়ক প্রকল্প, সফটওয়্যার রপ্তানি, শিল্পোদ্যোগ – সবক’টি ক্ষেত্রেই ভারত এগিয়ে চলেছে দ্রুততার সঙ্গে। প্রযুক্তিগত স্টার্ট আপ সংস্থা গড়ে তোলার ক্ষেত্রে বর্তমানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন ও ইজরায়েলের পরেই রয়েছে ভারতের নাম। ‘দ্য ইকোনমিস্ট’ সাময়িকীটিতে ভারতকে বর্ণনা করা হয়েছে বৈদ্যুতিন বাণিজ্যের এক নতুন অগ্রদূত হিসেবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কিন্তু এই সমস্ত সাফল্যের মধ্যেই আমরা আমাদের কাজকর্মকে সীমাবদ্ধ রাখতে চাই না। কারণ আমাদের মূল লক্ষ্য হল ‘সংস্কার থেকে রূপান্তর’। এই কাজ আমাদের এখনও সম্পূর্ণ করা বাকি। আমাদের কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে দার্শনিক উপলব্ধি হল সম্পদ সৃষ্টির উপযোগী পরিবেশ গড়ে তোলা, সেই সম্পদে সমৃদ্ধ করে তোলা প্রত্যেক ভারতবাসীকে এবং দরিদ্র, বঞ্চিত ও কৃষিজীবী মানুষের কাছে এই সম্পদ পৌঁছে দেওয়া। শ্রী মোদী বলেন, গ্রাম ও পরিকাঠামো ক্ষেত্রে আমাদের বিনিয়োগকে আমরা ক্রমশ বাড়িয়ে তুলছি। কারণ, গ্রামেই বসবাস অধিকাংশ ভারতীয়র। কিন্তু কৃষকদের হাত ধরে তোলাই আমাদের একমাত্র উদ্দেশ্য নয়। সেচ ব্যবস্থার প্রসারের মধ্য দিয়ে আমাদের লক্ষ্য তাদের আয় ও উপার্জন অন্তত দ্বিগুণ করে তোলা। কৃষি ছাড়াও রেল ও সড়ক ক্ষেত্রেও সরকারি বিনিয়োগের মাত্রা আমরা বৃদ্ধি করেছি। অর্থনীতির উৎপাদনশীলতা এবং সংযোগ তথা যোগাযোগ ব্যবস্থারগতিশীলতার মধ্যে তা বিশেষভাবে সহায়ক হয়ে উঠবে। বেসরকারি বিনিয়োগের বিষয়টি যখন বেশ দুর্বল অবস্থায় রয়েছে, তখন সরকারি বিনিয়োগের পরিমাণ বৃদ্ধি একান্ত জরুরি। সম্পদ ও অর্থনৈতিক সুযোগ সৃষ্টিতে অন্যান্য সংস্কারের কাজও আমরা শুরু করে দিয়েছি। শিল্পোদ্যোগের উৎসাহ-উদ্দীপনা আমাদের ‘স্টার্ট আপ ইন্ডিয়া, স্ট্যান্ড আপ ইন্ডিয়া’ কর্মসূচিকে সফল করে তুলবে বলেই আমার বিশ্বাস। স্টার্ট আপের উপযোগী বাজেট সংস্থানও রাখা হয়েছে। ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ কর্মসূচির সাফল্যের জন্য যা একান্তভাবে প্রয়োজন তা হল দেশের যুব সমাজের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি। তাই, দেশের শ্রমশক্তির দক্ষতা বৃদ্ধির লক্ষ্যে আমাদের রয়েছে এক বিশেষ কর্মসূচি। আমাদের এই দক্ষতা উন্নয়ন কর্মসূচি অর্থনীতির ২৯টি ক্ষেত্রে আজ প্রসারিত। জলবায়ু পরিবর্তন সংক্রান্ত সি ও পি-২১ শীর্ষ বৈঠকের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আগামী ২০৩০ সালের মধ্যে আমরা বিশ্বের ইতিহাসকে আরও নতুন রূপ দিতে আগ্রহী। এজন্য আমাদের প্রয়োজন দ্রুত অগ্রগতির পথে এগিয়ে যাওয়া। ঐ সময়কালের মধ্যে দেশের সংস্থাপিত মোট বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতার ৪০ শতাংশই উৎপাদিত হবে জীবাশ্ম বহির্ভূত জ্বালানি শক্তি থেকে। এটা অত্যন্ত আনন্দের কথা যে, আজ এখানে আমার সকল সহযোগী বন্ধুরা এক স্বর, একই মত ব্যক্ত করেছেন। আমরা জম্মু ও কাশ্মীর বলতে এ রাজ্যের চারটি ভাগকেই বুঝি, জম্মু, কাশ্মীর উপত্যকা, লাদাখএবং পাক অধিকৃত কাশ্মীর। আমিসকল রাজনৈতিক দলের নেতাদের প্রতি আন্তরিকভাবে কৃতজ্ঞ, তাঁরা জম্মু ও কাশ্মীর-এর বর্তমান পরিস্থিতি নিয়ে নিজেদের দুশ্চিন্তা ব্যক্ত করেছেন। বিগত ছ্য় দশক ধরে দেশের গণতন্ত্র যে সমৃদ্ধ পরম্পরা পোষণকরেছে সেটাই দেশের একতা ও অখণ্ডতার সবচাইতে বড় শক্তি। কিছু বিষয়ে আমাদেরমতপার্থক্য থাকতে পারে, কিন্তু দেশের অখণ্ডতা ও স্বাধীনতা প্রসঙ্গে আমরা ঐক্যবদ্ধএবং অভিন্নমত পোষণ করি। জম্মু ও কাশ্মীরের সাম্প্রতিক ঘটনাবলী প্রত্যেক ভারতীয়ের মতো আমারমনকেও ভারাক্রান্ত করে তুলেছে । এই পরিস্থিতিতে সবচাইতে বেশি ভোগান্তি হচ্ছে গরিবদের । এসব দেখে আমার খুব দুঃখ হচ্ছে । আমাদের মতো রাজনৈতিক কর্মীদের আসল ক্ষমতার উৎস হলেন এই সাধারণ গরিবমানুষেরাই । এই সাধারণমানুষ কিম্বা সেনা , পুলিশ কিম্বা যে কোনও নিরাপত্তা কর্মীরমৃত্যু হলে , যে কেউ আহত হলে আমরা সবাই দুঃখ পাই । তাঁদের পরিবারের সদস্যদের প্রতি আমরা সহানুভূতিশীল । আলাপআলোচনার রাস্তা খোলা আছে , গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে সকল সমস্যাসমাধানের জন্য আমরা প্রস্তুত। আমরা গোটা জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের প্রত্যেকনাগরিকের কল্যাণসাধনে বদ্ধপরিকর। এক্ষেত্রে প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী শ্রদ্ধেয় অটল বিহারী বাজপেয়ীর প্রদর্শিত পথেই আমরা এগিয়ে চলেছি । জম্মু ও কাশ্মীরকে ভারতমাতার মাথার মুকুট বলা হয়। আসলে জম্মু ওকাশ্মীরে সর্ব ধর্ম সমন্বয় ও সকল ধর্মকে সমান মর্যাদা দেওয়ার বহু-শতাব্দী প্রাচীনঐতিহ্য রয়েছে। জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্য আমাদের জাতির জনকদের সেই আস্থার প্রতীক যাআমাদের বিবিধের মাঝে ভারতীয় রূপের মহান মিলনকে তুলে ধরে। তারপরও আমাদের নিরাপত্তা–কর্মীরা নিয়মিত সংযমপ্রদর্শন করেছেন। পরিসংখ্যান অনুযায়ী বিশাল সংখ্যক নিরাপত্তা কর্মী আহত হয়েছেন। প্রত্যেককাশ্মীরবাসী শান্তি চান, তাঁরা গণতন্ত্রে আস্থা রাখতে চান। সেজন্যে ধারাবাহিকউত্তেজনার পর কিছু বিচ্ছিন্নতাবাদী শক্তির হুমকি অগ্রাহ্য করে কাশ্মীরের মানুষগণতন্ত্রের এই পবিত্র উৎসবে অংশগ্রহণ করে ভারতের গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার প্রতিনিজেদের আস্থা ব্যক্ত করেন। এমনকি বর্তমান অশান্তির কিছুদিন আগেও মুখ্যমন্ত্রীমেহবুবার বিধানসভা কেন্দ্রে বিপুল সংখ্যায় সাধারণ মানুষ ভোট দিয়েছেন। এই সত্যইপ্রমাণ করে যে বর্তমান অশান্তিকে যারা গণআন্দোলন আখ্যা দিচ্ছেন, তাঁরা আসলে গুজবরটাচ্ছেন। এই সন্ত্রাসবাদীরা বারবার কাশ্মীরেরজনজীবনকে বিপর্যস্ত করেছে। যখন থেকে এই সন্ত্রাসবাদ কাশ্মীরে মাথাচাড়া দিয়েছে, সেই১৯৮৯-১৯৯০ থেকে অদ্যাবধি আমাদের নিরাপত্তা কর্মীদের সতর্ক প্রতিআক্রমণে – · ৩৪হাজারেরও বেশি এ কে ৪৭ রাইফেল উদ্ধার হয়েছে · ৫হাজারেরও বেশি গ্রেনেড লঞ্চার উদ্ধার হয়েছে · প্রায়৯০টি লাইট মেশিনগান উদ্ধার হয়েছে। · ১২হাজারেরও বেশি পিস্তল আর রিভলবার উদ্ধার হয়েছে · ৩টিঅ্যান্টি ট্যাঙ্ক, আর ৪টি অ্যান্টি এয়ারক্রাফট গান উদ্ধার হয়েছে · ৩৫০টিরবেশি মিসাইল লঞ্চার উদ্ধার হয়েছে। · আরডিএক্সসহ ৬৩ হাজার কিলো বিস্ফোরক, ১ লক্ষের থেকেও বেশি গ্রেনেড ইত্যাদি উদ্ধার হয়েছে · অদ্যাবধি৫ হাজারেরও বেশি বিদেশি সন্ত্রাসবাদী,অর্থাৎ, ৫টি ব্যাটেলিয়নের সমকক্ষ সীমান্তপার থেকে অনুপ্রবেশকারী বিদেশিসন্ত্রাসবাদী মারা গেছে। এত অস্ত্র উদ্ধার হয়েছে, এত অনুপ্রবেশকারী বিদেশি সন্ত্রাসবাদী হত্যালীলার উদ্দেশ্য নিয়ে এসেছে যে পাকিস্তান যতই মিথ্যা বলুকনা কেন , বিশ্ববাসী তাঁদের অপপ্রচারকে মেনে নেবেন না । পাকিস্তান তো নিজের দেশের নাগরিকদের উপরওযুদ্ধবিমান দিয়ে বোমাবর্ষণ করেছে । এখন সময় এসেছে , পাকিস্তানকেবিশ্ববাসীর কাছে বালুচিস্তান আর পাক অধিকৃত কাশ্মীরের মানুষকে অত্যাচারের জবাব দিতেহবে । আমরা জনগণেরমৌলিক অধিকার রক্ষায় প্রতিজ্ঞাবদ্ধ । সন্ত্রাসবাদেরবিরুদ্ধেও আমাদের দেশ যতটা মানবিক , বিশ্বের আর কোনও গণতন্ত্রে তা নেই । আমাদের সরকারগুলি ও নিরাপত্তা বাহিনী সমূহ এক্ষেত্রে যথেষ্টসংযমের পরিচয় দিয়েছে । ভারত , পূর্ণশক্তিদিয়ে এই সন্ত্রাসের মোকাবিলার সংকল্প নিয়েছে । এটা আমাদের জাতীয় দায়িত্ব । আমাদের কাছে সাধ ও সাধ্য দুটোই গুরুত্বপূর্ণ , আর আমরা উভয়েরনির্বাহে সক্ষম । এই প্যাকেজের উদ্দেশ্যকেবলই সড়ক পরিবহন ব্যবস্থা ও বিদ্যুৎ সরবরাহ ব্যবস্থার উন্নয়ন নয়, এই রাজ্যের সকলক্ষেত্র ও প্রত্যেক বর্গের সম্পূর্ণ উন্নয়নের কথা মাথায় রাখা হয়েছে । ছেলেমেয়েদেরলেখাপড়ার সুযোগ, যুবক-যুবতিদেরকর্মসংস্থান, চিকিৎসার আধুনিক সুযোগসুবিধা, রাজ্যের পর্যটন ব্যবস্থার আধুনিকীকরণ,রাজ্যের ফল উৎপাদন ও বিপণনের বিশেষ সুবিধার কথা ভাবা হয়েছে। দ্রুত কর্মসংস্থানের সুযোগ বাড়াতে আমরাএখুনি ১০ হাজার স্পেশাল পুলিশ অফিসার, ১২০০ আধাসামরিক নিরাপত্তা কর্মী, আর, আই আরব্যাটেলিয়নে প্রায় চার হাজার পদে চাকরি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি। তাছাড়া উড়ান ও HIMAYAT প্রকল্পে প্রায় ১ লক্ষ ২৫হাজার নবীন প্রজন্মের মানুষদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থাকরেছি যাতে তাঁরা দক্ষ হয়ে উঠে উপযুক্ত কর্মসংস্থান পেতে পারেন । গোটা দেশআজ তাঁদের পাশে দাঁড়িয়েছে। কাশ্মীরে শান্তি , একতা ও সদ্ভাবনারপরিবেশ বজায় রাখতে আমরা শক্তহাতে সমস্ত ধরণের হিংসা , সন্ত্রাসও দেশবিরোধী গতিবিধিকে দমন করবো । প্রত্যেকমানুষের বৈধ অভিযোগ শোনা হবে এবং তাঁর সমস্যা সমাধান করা হবে । আমি আরেকবার জোর দিয়ে বলতে চাই , জম্মু ও কাশ্মীরএর বর্তমান পরিস্থিতিতে সকল রাজনৈতিক দল ও আপামর দেশবাসীকে ঐক্যবদ্ধভাবে মোকাবিলাকরতে হবে। রাজনৈতিক মতভেদ ভুলে কাশ্মীরে শান্তি ও প্রতিটি গ্রাম পঞ্চায়েতকেসম্পন্নতার শীর্ষে পৌঁছে দিতে চাই । আমার দৃঢ় বিশ্বাস, রাজ্য সরকারের এই ঐকান্তিক প্রচেষ্টাএবং আপনাদের সবার পূর্ণ সহযোগিতায় শীঘ্রই আবার জম্মু ও কাশ্মীরের জীবনযাত্রাস্বাভাবিক হবে। এক্ষেত্রে আমরা যে পদক্ষেপ নিয়েছি এবংআমাদের নীতি সম্পর্কে আরেকবার বলতে চাই : ১ ) আইনের শাসন এবং নিরাপত্তা বজায় রাখা যে কোনও সরকারেরদায়িত্ব। ৩ ) গণতান্ত্রিক পরম্পরা অনুসারে আমরা রাজনৈতিক প্রক্রিয়াকেসাদরে এগিয়ে নিয়ে যাব। আমার বিগতসফরকালে কুয়ালালামপুর-এ তোরানা গেট যৌথভাবে উদ্বোধন করেছিলাম আমি এবংপ্রধানমন্ত্রী নাজিব। সাঁচি স্তুপের আদলে তোরানা গেট হল আমাদের পারস্পরিক মৈত্রীসম্পর্কের এক বিশেষ প্রতীক। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে যে সমস্ত পরিকাঠামোপ্রকল্পের কাজ রূপায়িত হচ্ছে, তার সঙ্গে যুক্ত রয়েছে মালয়েশিয়ার বহু সংস্থাই।ভারতীয় সংস্থাগুলিও ক্রমশ যুক্ত হচ্ছে মালয়েশিয়ার অর্থনীতির সঙ্গে। বাণিজ্যিক অংশীদারিত্বেরএই সম্পর্ক আমাদের দু’দেশের বাণিজ্য সম্পর্ককে যে উচ্চতার এক নতুন মাত্রায় উন্নীতকরতে চলেছে, এ বিষয়ে আমি আশাবাদী। কৃষকদের কল্যাণে খাদ্য সুরক্ষা নিশ্চিত করারকাজেও আমরা পরস্পরের সহযোগী। মালয়েশিয়ায় সার প্রকল্প গড়ে তোলা এবং মালয়েশিয়ারউদ্বৃত্ত ইউরিয়া উপাদানকে ভারতে যোগানের লক্ষ্যে যে মউ স্বাক্ষরের প্রস্তাব করাহয়েছে তাকে আমরা স্বাগত জানাই। দু’দেশের ডিগ্রিগুলিকে পারস্পরিক ভিত্তিতে স্বীকৃতিদানসম্পর্কিত যে মউটি আজ এখানে স্বাক্ষরিত হচ্ছে, তা দ্বিপাক্ষিক সম্পর্কের উন্নয়নেরক্ষেত্রে এক বিশেষ দিকচিহ্ন হয়ে থাকবে কারণ, এই ঘটনায় উপকৃত হবে দু’দেশের ছাত্র ওনাগরিক সমাজ। মাননীয়প্রধানমন্ত্রী, সন্ত্রাস ও চরমপন্থার বিরুদ্ধে আপনার যোগ্যনেতৃত্ব সমগ্র অঞ্চলেরই উৎসাহ ও অনুপ্রেরণাকে উজ্জীবিত করে। প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রেআমাদের দীর্ঘ প্রসারিত সহযোগিতার সম্পর্ক দু’দেশের সশস্ত্র বাহিনীকে পরস্পরের অনেককাছে নিয়ে আসার কাজে সফল হয়েছে। আমদেরপারস্পরিক সহযোগিতা আজ প্রসারিত : আমাদের আজকের এই আলোচনা যে দু’দেশের কৌশলগতঅংশীদারিত্বকে এক পরবর্তী পর্যায়ে উন্নীত করবে, সে বিষয়ে আমি দৃঢ় বিশ্বাসী। ভারতেআপনার এই অবস্থান সফল ও উপভোগ্য হয়ে উঠুক এই কামনা জানাই। প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার আন্তর্জাতিক অপরাধপ্রতিরোধ ও গুরুতর সংঘবদ্ধ অপরাধ মোকাবিলায় সহযোগিতা ও তথ্যের আদানপ্রদানের জন্যভারত এবং ব্রিটেন ও নর্দার্ন আয়ারল্যান্ডের মধ্যে সমঝোতা স্মারকে (মউ) স্বাক্ষরেরঅনুমোদন দিল| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ইন্দোনেশিয়ায় জাকার্তা – পালেমব্যাঙ্গে অষ্টাদশ এশিয়ান গেমস্‌-এ পুরুষদের নৌকা বাইচ কোয়াড্রপল স্কালস্‌ বিভাগে স্বর্ণ পদক জয়ী ভারতীয় দলের চার সদস্য শরণ সিং, দাত্তু বাবান ভোকানাল, ওম প্রকাশ এবং সুখমিত সিং-কে অভিনন্দন জানিয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, “নৌকা বাইচে আমাদের দলের দারুণ সাফল্য। পুরুষদের নৌকা বাইচ কোয়াড্রপল স্কালস্‌ বিভাগে স্বর্ণ পদক পেয়ে তাঁরা ভারতের গর্ব বাড়িয়েছেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ২০১৮-র এশিয়ান প্যারা-গেম্‌স-এর পদকজয়ীদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তাঁদের অভিনন্দন জানিয়েছেন। এই উপলক্ষে প্রধানমন্ত্রী বলেন, পদকজয়ীদের স্বাগত জানাতে পেরে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। খেলোয়াড়দের ক্রীড়া নৈপুণ্যের প্রশংসা করে তিনি বলেন, মানসিক দৃঢ়তা এঁদের সাফল্যের অন্যতম কারণ। বিশ্ব আঙিনায় ভারতের ভাবমূর্তি তুলে ধরতে অবদান রাখার জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁদের প্রশংসা করেন। পদকজয়ী ক্রীড়াবিদদের প্রশিক্ষকদের ভূমিকারও প্রধানমন্ত্রী প্রশংসা করেন। “জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর দ্বাদশ বর্ষ পূর্তিউপলক্ষে বাহিনীর সকল সদস্যকে আমার অভিনন্দন। বিপর্যয় মোকাবিলা, ত্রাণ ও উদ্ধারেরকাজে জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর প্রচেষ্টা নিঃসন্দেহে প্রশংসনীয়। এই সংশোধন বিলটি বাস্তবায়িত হলে ভারতের মানবাধিকার রক্ষাসম্পর্কিত সংস্থা ও প্রতিষ্ঠানগুলির ভূমিকা ও দায়িত্বশীলতার মাত্রা বিশেষভাবেবৃদ্ধি পাবে। গুরুত্বপূর্ণ পরিকাঠামো প্রকল্পগুলির রূপায়ণে সরকারি উন্নয়ন সহায়তাসম্পর্কিত দ্বিপাক্ষিক কর্মসূচির আওতায় বাজার থেকে সরাসরি ঋণ গ্রহণের জন্য আর্থিকদিক থেকে সচ্ছল রাজ্য সরকারি সংস্থাগুলিকে অনুমতি দেওয়ার লক্ষ্যে একনীতি-নির্দেশিকা আজ অনুমোদিত হল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে । রঙের উৎসব হোলিতে জানাই আমার অভিনন্দন। তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী মাননীয়া জয়ললিতাজি, প্রকৃতঅর্থেই আজ একটি বিশেষ দিন। আজকের এই দিনটিতে মাননীয় পুতিন এবং আমি কুড়ানকুলাম পরমাণু প্রকল্পের ১ নম্বর ইউনিটটি উৎসর্গ করে সম্মানিত বোধ করছি। এইঅনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকার জন্য আমি বিশেষভাবে কৃতজ্ঞ প্রেসিডেন্ট পুতিনের কাছে। একইসঙ্গে, আমি আনন্দিত যে তামিলনাডুর মুখ্যমন্ত্রী জয়ললিতাজি এই উপলক্ষে আজ এখানে উপস্থিত আমাদের মাঝে। কুড়ানকুলাম১ নম্বর ইউনিটটি উৎসর্গ করার মধ্য দিয়ে ভারত-রাশিয়া সম্পর্কের এক ঐতিহাসিক পদক্ষেপের সূচনা হল। এই প্রকল্পের সফল রূপায়ণ শুধুমাত্র আমাদের বিশেষ এবং সহযোগিতামূলক কৌশলগত অংশীদারিত্বের একটি নজির মাত্র নয়। আমাদের অটুট মৈত্রী সম্পর্কের এ এক উৎসব পালনের মূহুর্ত। এরমধ্য দিয়ে এই ক্ষেত্রটিতে আমাদের সহযোগিতামূলক সম্পর্কের পথ চলা শুরু হল মাত্র। সাধারণভাবে অনেকেই হয়তো জানেন না যে, ১ হাজার মেগাওয়াট উৎপাদন ক্ষমতাসম্পন্ন কুড়ানকুলাম ১নম্বর ইউনিটটি হল ভারতের একমাত্র বৃহত্তম বৈদ্যুতিক শক্তি উৎপাদন ইউনিট। আগামীবছরগুলিতে আমাদের উচ্চাকাঙ্খামূলক পরমাণু শক্তি উৎপাদন সহযোগিতাকে আরও এগিয়ে নিয়েযেতে আমরা কৃতসংকল্প। শুধুমাত্র কুড়ানকুলামেই ১ হাজার মেগাওয়াটের আরও ৫টি ইউনিট স্থাপনের পরিকল্পনা করেছি আমরা। আমাদের সহযোগিতার এই যাত্রাপথে পরপর অনেকগুলি বড় ধরণের বিদ্যুৎ উৎপাদন ইউনিট গড়ে তুলবআমরা। আজকেরএই অনুষ্ঠান হল ভারত ও রাশিয়ার বিজ্ঞানী, প্রযুক্তিবিদ এবং কলাকুশলীদের নিয়ে গড়েতোলা টিমের পক্ষেও এক আনন্দঘন উপলক্ষের মূহুর্ত। তাঁদেরকঠোর শ্রম ও নিষ্ঠাকে আমি সম্মান জানাই; শ্রমের ফসল উৎপাদনের জন্য আমি অভিনন্দনওজানাই তাঁদের। ব্যাপকপ্রযুক্তিগত উন্নয়ন এবং ক্রমপ্রসারমান অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির মধ্য দিয়েই রচিত হয়েছেমানব প্রচেষ্টার ক্রমবিকাশের কাহিনী। কিন্তুএকথাও আমাদের অজানা নয় যে, তাতে পরিবেশের ওপর চাপও পড়েছে যথেষ্ট। ভারতসম্পর্কে আমার চিন্তাভাবনার মূলে রয়েছে, মাতা বসুন্ধরার প্রতি সম্ভ্রমপূর্ণ আচরণঅক্ষুণ্ণ রেখেই অর্থনৈতিক বিকাশের সাফল্যকে নিশ্চিত করা। শিল্পসমৃদ্ধির চালিকাশক্তিতে আমরা যুক্ত করেছি দূষণমুক্ত জ্বালানি সম্ভার। ভারতেরদূষণমুক্ত জ্বালানি উৎপাদনের নিরন্তর প্রচেষ্টায় কুড়ানকুলাম ১ নম্বর ইউনিটটি হল একগুরুত্বপূর্ণ সংযোজন। সবুজায়নেরপথে সমৃদ্ধি সম্ভব করে তোলার উপায় অনুসন্ধানের লক্ষ্যে এটি আমাদের যৌথ অঙ্গীকারেরএক প্রতীক বিশেষ। পরমাণুশক্তি উৎপাদনে আমাদের যৌথ প্রচেষ্টার সাফল্য আমাদের পারস্পরিক সহযোগিতারই একগৌরবময় প্রাপ্তি। শুধুতাই নয়, আমাদের সম্পর্ককে অটুট ও গতিশীল রাখতে এ হল আমাদের এক সাধারণ সংকল্প। সর্বোপরি,আমাদের পারস্পরিক সম্পর্কের বিষয় ও চরিত্রের পরিবর্তনে আপনার ব্যক্তিগত প্রতিশ্রুতি, নিরন্তর সমর্থনএবং বলিষ্ঠ নেতৃত্বই প্রতিফলিত হয়েছে এই ঘটনার মধ্য দিয়ে। এজন্যমিঃ প্রেসিডেন্ট আমি কৃতজ্ঞ আপনার কাছে। আপনাদেরমহান রাষ্ট্রের জনসাধারণের সঙ্গে খুব স্বাভাবিকভাবে এবং যথেষ্ট স্বাচ্ছন্দ্যেরসঙ্গেই এক বিশেষ সম্পর্কে যুক্ত রয়েছেন ভারতের জনসাধারণ। সেইসঙ্গে, ব্যক্তিগতভাবে আমাদের এই মৈত্রী সম্পর্ককে সর্বদাই বিশেষ মূল্যবান বলে মনেকরি আমি। সুতরাং,কুড়ানকুলাম বিদ্যুৎ প্রকল্পের ১ নম্বর ইউনিটটি আমাদের মৈত্রীপূর্ণ সহযোগিতাসম্পর্কের শক্তি ও উৎসাহের প্রতি উৎসর্গ করার জন্য আজ এক সঠিক মূহুর্তে এখানেমিলিত হয়েছি আমরা। ভারত-রাশিয়ামৈত্রী সম্পর্ক দীর্ঘজীবী হোক! প্রকল্পউৎসর্গ করার কাজে আমার সঙ্গে মিলিত হওয়ার জন্য আমি আরও একবার ধন্যবাদ জানাই মাননীয়পুতিনকে। একইসঙ্গে, এখানে আমাদের মাঝে উপস্থিত থাকার জন্য আমি আন্তরিকভাবে ধন্যবাদ জানাইজয়ললিতাজিকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ (৩০শে জানুয়ারি) সুরাটে অত্যাধুনিক সুপার স্পেশালিটি রসিলাবেন সেভান্তিলাল শাহ ভেনাস হাসপাতালের উদ্বোধন করেন। এই হাসপাতালটি আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের আওতায় সাধারণ মানুষকে সেবা প্রদান করবে বলে তিনি আনন্দ প্রকাশ করেন। এক জনসভায় ভাষণের সময় প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁর সরকার একটি সুস্থ ভারত গড়ে তুলতে কাজ করছে। দরিদ্রদের জন্য সরকারের গৃহীত বিভিন্ন পদক্ষেপের কথা উল্লেখ করেন শ্রী মোদী। তিনি বলেন যে, প্রধানমন্ত্রী সুরক্ষিত মাতৃত্ব অভিযান ও মিশন ইন্দ্রধনুষের মতো উদ্যোগ মৃত্যুর হার কমানোর ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে। প্রধানমন্ত্রী লালকেল্লা থেকে স্বচ্ছ ভারত অভিযানের ঘোষণার বিষয়ে যারা বিদ্রূপ করেছেন, তাদের যথাযথ জবাব দিয়ে তিনি বলেন, আজ স্বাস্থ্যবিধির ক্ষেত্রে সুবিস্তৃত উদ্যোগ নেওয়ার ফলে ৯৭ শতাংশ জনসংখ্যা পরিষ্কার শৌচাগারের সুবিধা পেয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্প সুস্থতর ভারত গড়ে তোলার ক্ষেত্রে একটি সম্পূর্ণ নতুন ব্যবস্থা গড়ে তুলবে। শ্রী মোদী জানান, এখন জনসাধারণ বেশি সংখ্যায় জেনেরিক ওষুধ পাচ্ছেন যা কেবল চিকিৎসার খরচই কমাবে না, বরং বহু মূল্যবান জীবন বাঁচাবে। সন্ত্রাস মোকাবিলা করে নিরাপত্তা সুনিশ্চিত করতে শ্রীলঙ্কাকে সবরকম সাহায্যের আশ্বাস দেন প্রধানমন্ত্রী। পরিবেশসুরক্ষার কাজে যে সমস্ত ব্যক্তি ও সংগঠন সদা সচেষ্ট, তাদের সকলকেই জানাই আমারসম্মান ও অভিবাদন। দাউদি বোহ্‌রা সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রধান মাননীয় সৈয়দ্‌না মুফাদ্দল সৈফুদ্দিন রবিবার সাক্ষাৎ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে। নয় সদস্যের এক প্রতিনিধিদল সঙ্গে নিয়ে তিনি নয়াদিল্লিতে এসেছেন। মুম্বাই’কে একটি স্মার্ট নগরী রূপে গড়ে তোলার লক্ষ্যে ঐ শহরের ভেন্ডিবাজার এলাকার উন্নয়নে দাউদি বোহ্‌রা সম্প্রদায়ের বিশেষ উদ্যোগ ও প্রচেষ্টারও প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী। পল্লী উন্নয়নের ক্ষেত্রে ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধিরলক্ষ্যে ভারত ও এশীয়- আফ্রিকা পল্লী উন্নয়ন সংগঠন (এ এ আর ডি ও)-এর মধ্যে একটি মউস্বাক্ষরের প্রস্তাব আজ অনুমোদিত হ’ল প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বেঅনুষ্ঠিত কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে। প্রেসিডেন্ট কেনিয়াট্টা এবংকেনিয়ার জনসাধারণ এক অকৃত্রিম আন্তরিকতার মধ্য দিয়েই বরণ করে নিয়েছিলেন আমাকে। আজআমি এখানে প্রেসিডেন্ট কেনিয়াট্টা এবং তাঁর প্রতিনিধিদলকে ভারতে স্বাগত জানানোরসুযোগ পেয়ে বিশেষভাবে আনন্দিত। এক সুপ্রাচীন নিবিড় বন্ধন রয়েছে আমাদের এই দুটিদেশের মধ্যে। ভারত ও কেনিয়া একত্রেই সংগ্রাম করেছে ঔপনিবেশিকতার বিরুদ্ধে। গণতান্ত্রিক মূল্যবোধে দু’দেশেরই এক গভীর ও সাধারণআস্থা, উন্নয়নের অগ্রাধিকার সম্পর্কে মিলিত চিন্তাভাবনা এবং ভারত মহাসাগরের উষ্ণস্রোতধারা আমাদের দুটি দেশের সমাজ ব্যবস্থাকে নিবিড়ভাবে আপন করে নিয়েছে। প্রেসিডেন্টেরসঙ্গে আলোচনাকালে আজ আমি আমাদের দু’দেশের সম্পর্কের প্রতিটি ক্ষেত্র সম্পর্কেইবিশেষভাবে পর্যালোচনা করেছি। গভীর অর্থনৈতিক সহযোগিতার বিষয়টিকে আমরা আমাদের কর্মপ্রচেষ্টারএক বিশেষ ক্ষেত্ররূপে হিসেবে চিহ্নিত করেছিলাম গত বছর আমার কেনিয়া সফরকালে। এরপরিপ্রেক্ষিতে দ্বিপাক্ষিক বাণিজ্যের সম্প্রসারণ, দু’দেশের অর্থনীতিতে আরও বেশিকরে মূলধন বিনিময় এবং উন্নয়নের ক্ষেত্রে এক নিবিড় অংশীদারিত্বের বিষয়গুলিকে আমরাবিশেষ অগ্রাধিকার দিয়েছিলাম। ডালশস্যের উৎপাদন ও আমদানির লক্ষ্যে কেনিয়ারসঙ্গে এক দীর্ঘমেয়াদি ব্যবস্থা চালু করার বিষয়টি বর্তমানে রয়েছে আলোচনা ওঅনুসন্ধানের পর্যায়ে। কেনিয়ার কৃষক বন্ধুদের সঙ্গে শ্রেষ্ঠ জৈব কৃষি পদ্ধতিসম্পর্কে সহযোগিতা বিনিময় সম্ভব হলে আমরা বিশেষভাবে আনন্দিত হব। ক্যান্সারেরচিকিৎসার জন্য ভাবাট্রন যন্ত্র ইতিমধ্যেই পাঠানো হয়েছে কেনিয়াট্টা জাতীয়হাসপাতালে। সমুদ্রঅঞ্চলে উদ্ভূত চ্যালেঞ্জগুলি আমাদের দু’দেশেরই সাধারণ উদ্বেগের কারণ। আমাদের অগ্রাধিকারের কয়েকটি সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্র হল জলবিজ্ঞান,যোগাযোগ নেটওয়ার্ক, জলদস্যুতা রোধ, ক্ষমতা ও দক্ষতা বৃদ্ধি, বিনিময় সফরসূচি এবংপ্রতিরক্ষা-চিকিৎসা ক্ষেত্রে সহযোগিতা প্রসার। নিরাপত্তা ক্ষেত্রে আমাদের দক্ষতা ওসহযোগিতাকে আরও নিবিড় করে তোলার লক্ষ্যেও সম্মত হয়েছি আমরা। ভারতীয়বংশোদ্ভূত কেনিয়াবাসী এক বিরাট জনগোষ্ঠী আমাদের দু’দেশের সম্পর্কে এক গুরুত্বপূর্ণও উৎসাহজনক ভূমিকা পালন করে থাকে। আমাদের বাণিজ্য, বিনিয়োগ এবং সাংস্কৃতিক বিনিময়কর্মসূচির সঙ্গে তাঁদের যুক্ত করার প্রশ্নে বিশেষভাবে আলোচনা ও মতবিনিময় করেছি আমিএবং প্রেসিডেন্ট কেনিয়াট্টা। আমাদের সিদ্ধান্তগুলি রূপায়ণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতপর্যায়ে বিশেষভাবে নজর দেওয়ার জন্য প্রেসিডেন্ট ও আমি সম্মত হয়েছি গত বছর আমাদেরআলোচনাকালে। রূপায়ণের কাজ যাতে দ্রুত সম্পন্ন হয় তা আমাদের নিশ্চিত করা প্রয়োজন। গুজরাটও দিল্লিতে উপস্থিত থাকার জন্য আমাদের আমন্ত্রণ গ্রহণ করে যেভাবে আপনি আমাদেরসম্মানিত করলেন তাতে ভারতীয় জনসাধারণ এবং আমার নিজের পক্ষ থেকেও আমি আরও একবারবিশেষ ধন্যবাদ জানাই আপনাকে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি ঝাড়খন্ডের রাজ্য দিবসে সে রাজ্যের জনগনকে শুভেচ্ছা জানালেন| প্রধানমন্ত্রীশ্রী নরেন্দ্র মোদির পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা আমদানি-রফতানি ক্ষেত্রেপারস্পরিক প্রশাসনিক সহায়তার ক্ষেত্রে ভারত ও জর্ডানের মধ্যে একটি চুক্তিস্বাক্ষরের ও অনুসমর্থনের অনুমোদন দিল| নয়া দিল্লি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদি হিমাচলপ্রদেশের মান্ডি জেলায় ভূমিধসসংক্রান্ত দুর্ঘটনায় প্রাণহানির জন্য শোক প্রকাশ করেছেন| হিমাচলপ্রদেশের মান্ডি জেলায় যারা আহত হয়েছেন, তাঁদেরদ্রুত আরোগ্যের জন্য আমি প্রার্থনা করছি| মঞ্চে উপস্থিতসকল শ্রদ্ধেয় ব্যক্তি এবং বিপুল সংখ্যায় আগত আমার পুণের প্রিয় ভাই ও বোনেরা, আমাদের গ্রামে রোজগারেরসুযোগ তৈরি করতে হবে। শহরে যেসব সম্ভাবনা আছে, সেগুলি যাতে গ্রামেও হয়।যে সুযোগ শহরে পাওয়া যায়, তা যেন গ্রামেও পাওয়া যায়। তবেই আমরা গ্রাম থেকে শহরমুখীদৌড় কিছুটা কমিয়ে আনতে পারি। অন্যদিকে, যদি আমরা টুকরো টুকরো করে ভাবি, এই মাত্রতো জিতে এলাম। এইরারবান মিশনের সরাসরি অর্থ হল – আত্মা হবে গ্রামের আর পরিষেবা হবে শহরের। গ্রামেরআত্মা যেন অবিনশ্বর থাকে, সুরক্ষিত থাকে। সেজন্য আমরারারবান মিশনের মাধ্যমে দেশের অসংখ্য গ্রামকে তুলে ধরেছি, পরিষেবা উন্নয়নের চেষ্টাচালিয়ে যাচ্ছি, যাতে শহরগুলির বোঝা কমানো যায়। অন্যদিকে, শহরে ব্যাপক পরিবর্তনআনতে হলে আগে তার পরিকাঠামো উন্নত করতে হবে। আমাদের দেশে এই পরিকাঠামো উন্নয়নেরপ্রতি উদাসীনতা রয়ে গেছে। একটা রাস্তা নির্মাণের ক্ষেত্রে দু’পাশে জায়গা ছেড়েদেওয়ার কথা আমরা ভাবি না, ভবিষ্যতের কথা ভাবি না, কোনওমতে জোড়াতালি দিয়ে কাজচালিয়ে যাওয়ার মানসিকতা। পরে যখন রাস্তা চওড়া করার প্রয়োজন হয়, ততদিনে দু’পাশেরমানুষ তা জবরদখল করে নিয়েছে, আর তারপর উকিল-আদালত চলতে থাকে। ২৫-৩০ বছর পর্যন্তকোনও মীমাংসা হয় না। এভাবেই আমাদের প্রশাসন চলছে। আমরা ঐ তাৎক্ষণিক লাভের কথা ভুলে গিয়েএমন ব্যবস্থা বিকশিত করতে চাইছি যাতে আমাদের গড়ে তোলা পরিকাঠামো আগামীদিনের বোঝাবহন করারও ক্ষমতা রাখে। কল্পনাকরতে পারেন, আমরা কত বড় আর্থিক বোঝা বহনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আর, আমাদের দ্বিতীয় প্রচেষ্টা হল যে কাজই হাতে নিই না কেন, তানির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে পূর্ণ করা। যথাসম্ভব ২৫-৩০ বছর পরবর্তী প্রয়োজনকে মাথায়রেখে পরিকল্পনা গড়ে তোলার চেষ্টা করি। এর আর্থিক প্রভাব আজ হয়ত অনুভূত নাও হতেপারে কিন্তু এই আর্থিক উজ্জীবন আমরা ২-৪ বছরের মধ্যে অনুভব করতে শুরু করব। আমরাজীবনযাপনে উৎকর্ষ আনতে চাই। আজ সারা দেশে আড়াই লক্ষ পঞ্চায়েতকে অপ্টিক্যাল ফাইবারনেটওয়ার্কে যুক্ত করার বিশাল কর্মযজ্ঞ শুরু হয়েছে। আগে পরিকাঠামো উন্নয়নের কথা ভাবলে রাস্তা, রেল বড়জোরবিমানবন্দরের কথা উঠতো। সবার জন্য আইওয়ে সুনিশ্চিত করতে হলে সারা দেশে অপ্টিক্যাল ফাইবারের জালবিছানো অনিবার্য। সেজন্য আমরা কাজ করার সুযোগ পেয়েছি। আপনাদের মাঝে আসারসৌভাগ্য হয়েছে। জানি না, জগতাপজি আজ কতটা খুশি, কারণ, রাজনৈতিক কারণে অনেক সময়েখুশি হলেও তা প্রকাশ করা যায় না। একটু আগেই ভেঙ্কাইয়াজি বলছিলেন, পুণে ২৮ কোটিরবদলে ১৬০ কোটি পেয়েছে। এখন নির্বাচন এসে গেলে পৌরসভার হাতে ১৬০ কোটি টাকা এলেওতারা কিছু করতে পারতো না। ভাই ও বোনেরা,পুণেবাসীর কাছ থেকে আমার একটি প্রত্যাশা রয়েছে। এই শহর দেশের শিল্পোন্নত শহরগুলিরমধ্যে একটি। এই শহর একটি উচ্চ শিক্ষার পীঠস্থানও। এখন তো আধার কার্ডের মাধ্যমেও পরিষেবা পেতেপারেন। মোবাইলে নিজের আধার নম্বর আর অ্যাকাউন্ট নম্বর টিপুন – লেনদেন সহজ হয়েযাবে। নোট বেশি ছাপা হলে তার মূল্য কমে যায়। আপনারাই ভাবুন,গত ৮ নভেম্বরের আগে ১০০ টাকার কি মূল্য ছিল! আমার লড়াই এই ছোটদের শক্তি বৃদ্ধির লড়াই।দরিদ্র মানুষকে সামর্থ্য প্রদানের লড়াই। কিন্তু আপনারদেখেছেন, হাতে গোনা কয়েকজন এসব পছন্দ করছেন না। তা হলে আমরাকি করতে আছি। ভাই ও বোনেরা, আপনাদের প্রতি পূর্ণ আস্থা রেখে অনেকভাবনাচিন্তা করে আমরা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছি, আমার দৃঢ় বিশ্বাস, আমাদের জয় হবেই। এইমেট্রোরেলের কাজ দ্রুতগতিতে এগিয়ে যাবে। মহারাষ্ট্রের নির্বাচনের আগে আমিপ্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, বিগত ১৫ বছর ধরে যে কাজ থেমে আছে, যে গাড়ি গর্তে পড়ে আছেতাকে টেনে তুলে সচল করতে হলে ডবল ইঞ্জিন লাগাতে হবে। একটি কেন্দ্রীয় সরকারেরইঞ্জিন আরেকটি রাজ্য সরকারের ইঞ্জিন। একইসঙ্গে, দুই দেশের রেল সংস্থার মধ্যে বিশেষজ্ঞ, রিপোর্ট ও প্রযুক্তিগত নথিপত্র বিনিময়ের পাশাপাশি বিশেষ প্রযুক্তিগত ক্ষেত্রে গুরুত্ব দিয়ে প্রশিক্ষণ শিবির, আলোচনাসভা বা কর্মশিবির আয়োজনের ক্ষেত্রেও সমঝোতাপত্রটি সহায়ক হবে। · ভারতে সর্বাধুনিক গবেষণা ও উন্নয়নকেন্দ্র স্থাপনে সহযোগিতা, · প্রযুক্তিগত বিষয়ে সেমিনার আয়োজনের পরিকল্পনা ও তা কার্যকর করা, · ভারতের আরডিএসও কর্মীদের জন্য স্বল্পমেয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মসূচি, · নির্দিষ্ট প্রকল্পগুলির জন্য আরডিএসও এবং সে দেশের কেআরআরআই-এর কর্মী বিনিময় কর্মসূচি, · দুই দেশে রেল শিল্পের সার্বিক উন্নয়নে শলা-পরামর্শ এবং · উভয় পক্ষের সহমতের ভিত্তিতে অন্যান্য ক্ষেত্রে সহযোগিতা বৃদ্ধি। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বুধবার সকাল ৯.৩০ মিনিটে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে কৃষকদের সঙ্গে সরাসরি মত বিনিময় করবেন। এই মত বিনিময় অনুষ্ঠানে কৃষকদের কথা শোনার সরাসরি সুযোগ মিলবে। কৃষকদের উপার্জন দ্বিগুন বাড়ানোর বিষয় নিয়েও আলোচনা হবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসুর জন্ম জয়ন্তীতেতাঁর প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “নেতাজী সুভাষ চন্দ্রবোসুর বীরত্ব প্রতিটি ভারতবাসীকে গর্বিত করেছে। মউ স্বাক্ষরের ফলেভারতের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলি অন্তর্ভুক্তিমূলক বিকাশের এক বিশেষ সুযোগলাভ করবে। বিদেশের ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প সংস্থাগুলির বিশেষ বিশেষ পন্থাপদ্ধতি ওপ্রক্রিয়া অনুসরণের সুযোগও সম্প্রসারিত হবে ভারতীয় শিল্প ক্ষেত্রগুলির কাছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী মেঘালয়ের রাজ্যাভিষেক দিবসে ঐ রাজ্যেরমানুষদের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়েছেন। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “মেঘালয়ের মানুষেরঅকৃত্রিম স্নেহ, ভালোবাসার পরিচয় আমি সদাসর্বদাই উপলব্ধি করে চলেছি। এই রাজ্যেরপ্রাকৃতিক সৌন্দর্য মুগ্ধ করার মতো। খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে দু দেশের মধ্যে সম্পর্ক, পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং আস্হা এই সমঝোতার ফলে আরও গভীরতর হবে। উভয় দেশেই খাদ্য নিরাপত্তার ক্ষেত্রে সবচেয়ে ভাল কাজ বিষয়ে এই সমঝোতাটি দু-দেশের মধ্যে বোঝাপড়া আরও জোরদার করবে। বিহারের রাজ্যপাল শ্রী রামনাথ কোবিন্দ, তাইওয়ানের শ্রদ্ধাভাজন মিং কোয়াং শি, ভিয়েতনামের অতিথি শ্রদ্ধেয় থিক থিয়েন তাম, রাশিয়া থেকে আগত শ্রদ্ধেয় তেলো তুলকু রিনপোশে, শ্রীলঙ্কার প্রতিনিধি শ্রদ্ধেয় বানাগালা উপাতিসা, মন্ত্রিসভায় আমার সহকর্মী শ্রী কিরেন রিজিজু, ভুটান সরকারের মন্ত্রীমহোদয় লিয়োনপো নামগে দোর্জি, মঙ্গোলিয়ার মাননীয় মন্ত্রী বায়ারসাইখান, মহাসংঘের মাননীয় সদস্যবৃন্দ এবং এ দেশ সফররত বিদেশের মন্ত্রী ও কূটনীতিকবৃন্দ, আপনাদের সকলের মাঝে আজ এখানে উপস্থিত থাকতে পেরে আমি খুবই আনন্দিত। বুদ্ধগয়ায় আসতে পেরে আমি নিজেকে আর্শীবাদধন্য মনে করছি। পণ্ডিত জওহরলাল নেহরু এবং অটল বিহারী বাজপেয়ীর পরে এই পবিত্র স্থান দর্শন করার সুযোগ আমার হয়েছে। আজ একটি বিশেষ দিনে আমি আপনাদের সঙ্গে এখানে মিলিত হয়েছি। আমাদের দ্বিতীয় রাষ্ট্রপতি শিক্ষক ও সুপণ্ডিত ডঃ সর্বপল্লী রাধাকৃষ্ণণের জন্মবার্ষিকী স্মরণে আজ আমরা ভারতে শিক্ষক দিবস পালন করছি। বিশ্ব ইতিহাসে যাঁর শিক্ষাদর্শের প্রভাব ছিল সুদূরপ্রসারী সেই গৌতম বুদ্ধ সম্পর্কে আলোচনার জন্যই আজ আমরা এখানে সমবেত। বহু শতাব্দী ধরে তাঁর শিক্ষা ও বাণী অনুপ্রাণিত করেছে বিশ্বের কোটি কোটি মানুষকে। তাঁর কাছে শিক্ষণীয় অনেক কিছুই রয়েছে বিশ্ববাসীর জন্য। যখন আমরা ভগবান শ্রীকৃষ্ণের কথা আলোচনা করি তখন আমরা বলি “শ্রী কৃষ্ণম বন্দে জগৎ গুরুম” অর্থাৎ সকল শিক্ষকের শিক্ষক এবং সকল গুরুর গুরু হলেন শ্রীকৃষ্ণ স্বয়ং। গৌতম বুদ্ধ এবং ভগবান শ্রীকৃষ্ণ উভয়েই বিশ্ববাসীকে অনেক কিছুই শিক্ষা দিয়ে গেছেন। তাই এই মহাসম্মেলনের মূল বিষয় একদিক থেকে এই দুই জগতপুরুষের মূল্যবোধ ও আদর্শকে কেন্দ্র করেই অনুপ্রাণিত। তাঁরা দু’জনেই পন্থা-পদ্ধতি ও ক্রিয়ার বিষয়টিকে বিশেষ প্রাধান্য দিয়ে গেছেন। সমস্তরকম ভেদাভেদ ও বৈষম্যের ঊর্ধ্বে উঠে মানুষকে একত্রিত করার এক ঐশ্বরিক ক্ষমতা ছিল এই দুই মহান আত্মপুরুষের। বর্তমান যুগে তাঁদের এই শিক্ষাদর্শ ব্যবহারিক দিক থেকে খুবই প্রাসঙ্গিক এবং সর্বকালে, সর্বযুগে তা এক শাশ্বত সত্য। আজ আমরা যে স্থানটিতে এই সমস্ত কথা আলোচনার জন্য মিলিত হয়েছি তারও রয়েছে এক বিশেষ তাৎপর্য। কারণ, মানবজাতির ইতিহাসে বুদ্ধগয়া এক বিশেষ স্থান অধিকার করে রয়েছে। তাই, জন্মাষ্টমীর শুভক্ষণ এবং শিক্ষক দিবস পালনের এই মুহূর্তে আলোচনায় মিলিত হওয়ার পক্ষে এই স্থানটি হল আদর্শ। বিবেকানন্দ আন্তর্জাতিক ফাউন্ডেশন ও টোকিও ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে এবং দিল্লির আন্তর্জাতিক বৌদ্ধ কনফেডারেশনের সহযোগিতায় অনুষ্ঠিত ‘সংঘাত পরিহার ও পরিবেশ সচেতনতা’ সম্পর্কিত প্রথম আন্তর্জাতিক হিন্দু-বৌদ্ধ মহাসম্মেলনে অংশগ্রহণের সুযোগ গত পরশু আমার হয়েছিল। সংঘাত সম্পর্কে প্রস্তাবনা নয়, সংঘাত পরিহার এবং শুধুমাত্র পরিবেশ নিয়ন্ত্রণ নয়, প্রয়োজন পরিবেশ সচেতনতা – এই ধারণা ও চেতনা থেকেই আয়োজিত এই মহাসম্মেলন। বিশ্বের যে দুটি কঠিন চ্যালেঞ্জ মানবজাতির পক্ষে আশঙ্কার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে সে সম্পর্কে আমি কিছু মতবিনিময়ও করেছিলাম। অন্যদিকে, অন্যান্য বৌদ্ধ দেশগুলিও তাদের নিজের নিজের দেশে এই ধরণের সম্মেলন আয়োজনের উদ্যোগ নেবে বলেও জানিয়ে দিয়েছে। অর্থনৈতিক তথা সভ্যতার এক মূল কেন্দ্র হিসেবে এশিয়ার উত্থানের সঙ্গে এই ঘটনা এক অসাধারণ সমাপতন। এই দুটি বিষয় সম্পর্কে দু’দিনের এই সম্মেলনে মোটামুটিভাবে এক সহমতে উপনীত হওয়া গেছে। পরিবেশের প্রশ্নে এই সম্মেলন মতপ্রকাশ করেছে যে প্রাকৃতিক ঐতিহ্যের সুরক্ষার মূলে রয়েছে ধর্মীয় দর্শন যা নিরন্তর উন্নয়নের দিশারী। রাষ্ট্রসঙঘও এ ব্যাপারে একমত যে মানবজাতির স্থানীয় ও আঞ্চলিক সংস্কৃতির বিকাশের মধ্য দিয়েই উন্নয়ন নিরন্তর হয়ে উঠতে পারে। আমার মনে হ্য় বৈচিত্র্যের যে পৃথিবীতে আমরা বাস করছি তাকে এক উন্নয়নের আদর্শ স্থান হিসেবে গড়ে তোলার ক্ষেত্রে এটি একটি ইতিবাচক দিক। বিশ্ব পর্যায়ে চিন্তাভাবনার জগতে যে আলোড়ন সৃষ্টি হয়েছে তা এমন এক পরিবেশের বাতাবরণ গড়ে তুলেছে যা হিন্দু-বৌদ্ধ সমাজকে তাদের সম্মিলিত মত ও আদর্শের কথা বিশ্ব প্রাঙ্গণে ছড়িয়ে দেওয়ার কাজে অনুপ্রেরণা যোগাবে। ভগবান বুদ্ধের আবির্ভাব এবং তাঁর শিক্ষাদর্শের ফলে সবচেয়ে বেশি উপকৃত হয়েছে হিন্দু দর্শন। অনেক পণ্ডিত ও বিদগ্ধ ব্যক্তি হিন্দু ধর্মের ওপর বুদ্ধের প্রভাব নানাভাবে বিশ্লেষণ করেছেন। আদি শংকরাচার্যের ওপর বুদ্ধের প্রভাব এতটাই ছিল যে তাঁকে বলা হত হিন্দু দার্শনিক। সাধারণ জনতার কাছে বুদ্ধ ছিলেন এমনই শ্রদ্ধার পাত্র যে জয়দেব তাঁর ‘গীত গোবিন্দ’ গ্রন্থে মহাবিষ্ণু বলে বন্দনা করেছেন বুদ্ধকে যিনি অহিংসা প্রচারের জন্যই ধরাধামে অবতীর্ণ হয়েছিলেন। সুতরাং, বুদ্ধের আবির্ভাবের পর হিন্দু ধর্ম হয়ে উঠেছিল বৌদ্ধ-হিন্দু ধর্ম বা হিন্দু-বৌদ্ধ ধর্ম। দুটি ধর্ম বিশ্বাসই বর্তমান বিশ্বে অবিচ্ছেদ্য এবং পরস্পর সম্পৃক্ত। বুদ্ধ কখনই বেদ, বর্ণ, ধর্মগুরু বা আচার-আচরণের কাছে নতি স্বীকার করেননি। বুদ্ধই ছিলেন প্রথম ব্যক্তি যিনি বিশ্বকে এক সম্পূর্ণ নীতি-ব্যবস্থা উপহার দিয়েছিলেন। নারী-পুরুষ সকলেরই যে সমান আধ্যাত্মিকতার অধিকার রয়েছে – এই শিক্ষাদর্শের প্রবক্তা ছিলেন তিনি। ভারতের এক মহান হিন্দু দার্শনিকের এই যে গভীর শ্রদ্ধামিশ্রিত অভিজ্ঞতা তার পরিপ্রেক্ষিতে বর্তমান হিন্দু ধর্মকে মনে-প্রাণে বৌদ্ধ-হিন্দু ধর্ম বললে ভুল কিছু বলা হবে না। বুদ্ধ ছিলেন ভারতের এক উজ্জ্বল জ্যোতিষ্ক যিনি সকল ধর্মকেই গ্রহণ করেছিলেন তাঁর আদর্শ রূপে। ভারতে বহু আধ্যাত্মিক মহাগুরুর চিন্তাভাবনার ফসল ছিল হিন্দু ধর্ম এবং তাঁদের মধ্যে বুদ্ধই ছিলেন অগ্রগণ্য। আর এভাবেই গড়ে উঠেছে ভারতের ধর্মনিরপেক্ষ প্রকৃতি বা চরিত্র। বুদ্ধগয়ায় যে মহানির্বাণের অভিজ্ঞতা হয়েছিল বুদ্ধের তারই আলোয় আলোকিত হিন্দু ধর্ম। আমরা ভারতে বুদ্ধগয়াকে এমনভাবে গড়ে তুলব যাতে এই স্থানটি এক আধ্যাত্মিক রাজধানী এবং বিশ্বের বৌদ্ধ সমাজের সঙ্গে ভারতের সভ্যতার এক অটুট বন্ধন রূপে প্রতিভাত হয়। পবিত্রতম এই স্থানটি আমাদের পরমাত্মীয় বৌদ্ধ জাতিগুলি যাতে তাদের আধ্যাত্মিক প্রয়োজনে ব্যবহার করতে পারে সেজন্য ভারত সরকার সম্ভাব্য সকলরকম প্রচেষ্টাই চালিয়ে যাবে। বৌদ্ধ ধর্ম এবং আধ্যাত্মিক নেতৃবৃন্দের ঘোষণা পাঠ করে আমি আনন্দিত হয়েছি। জাপানের প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে সহনশীলতা, বৈচিত্র্য, সহমর্মিতা এবং ভ্রাতৃত্বের যে কথা সেদিন বলেছিলেন আমি তারই প্রতিধ্বনি করি। এই মহাসমাবেশে তাঁর বার্তা এবং এই উদ্যোগকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য তাঁর সতত সমর্থন নিঃসন্দেহে আমাদের শক্তি যুগিয়ে যাবে। আমি আরও একবার আপনাদের সকলকে শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন জানাই। সংঘাত ও সংঘর্ষের ঊর্ধ্ব উঠে সভ্যতার সম্প্রীতি ও বিশ্ব শান্তি বজায় রাখার যে আহ্বান এই মহাসম্মেলন রেখেছে তা আমাদের মধ্যে এক নতুন আশার সঞ্চার করেছে। আমাদের জ্ঞান উত্তরাধিকার সূত্রে আমাদের ভবিষ্যৎ প্রজন্মেও যাতে সঞ্চারিত হয় এবং ব্যবহারিক ক্ষেত্রে তা যাতে প্রাসঙ্গিক হয়ে ওঠে সেজন্য আপনাদের নিরন্তর ও সংকল্পবদ্ধ প্রচেষ্টার জন্য আপনাদের সকলকে জানাই শুভেচ্ছা। শুধুমাত্র আমাদের বা অন্যের জন্যই নয়, সমগ্র মানবজাতির সমৃদ্ধি এবং বসুন্ধরার দান এই সুন্দর প্রাকৃতিক পরিবেশ রক্ষার ক্ষেত্রেও তা একান্ত প্রয়োজন। সাধারণতন্ত্রী ভারতের ক্রীড়া ও যুব বিষয়ক মন্ত্রকের সঙ্গে বেলারুশ সাধারণতন্ত্রের শিক্ষা মন্ত্রকের মধ্যে সম্পাদিত মউ সাধারণতন্ত্রী ভারতের দক্ষতা বিকাশ ও শিল্পোদ্যোগ মন্ত্রকের সঙ্গে বেলারুশ সাধারণতন্ত্রের শিক্ষা মন্ত্রকের মধ্যে পেশাগত শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ ক্ষেত্রে সহযোগিতা সম্পর্কিত সম্পাদিত মউ ভারতের জাতীয় বিজ্ঞান অ্যাকাডেমি (আইএনএসএ) এবং বেলারুশের ন্যাশনাল অ্যাকাডেমি অফ সায়েন্সেস-এর মধ্যে সম্পাদিত চুক্তি ভারতের নয়াদিল্লিতে অবস্থিত ভারতীয় কৃষি গবেষণা পরিষদ এবং বেলারুশের গোর্কি-তে অবস্থিত বেলারুশ রাষ্ট্রীয় কৃষি অ্যাকাডেমির মধ্যে কৃষিশিক্ষা ও গবেষণা সংক্রান্ত মউ সাধারণতন্ত্রী ভারতের কৃষি ও কৃষককল্যাণ মন্ত্রক এবং বেলারুশ সাধারণতন্ত্রের কৃষি ও খাদ্য মন্ত্রকের মধ্যে ১৬ এপ্রিল, ২০০৭ সালে সম্পাদিত চুক্তির সংশোধন সম্পর্কিত প্রোটোকল সাধারণতন্ত্রী ভারতের এবং বেলারুশ সাধারণতন্ত্রের মধ্যে ২০১৮-২০২০ সময়কালের জন্য সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে সহযোগিতা কর্মসূচি সাধারণতন্ত্রী ভারতের পেট্রোলিয়াম ও প্রাকৃতিক গ্যাস মন্ত্রক এবং বেলারুশের তেল ও রসায়ন সম্পর্কিত দপ্তরের মধ্যে তেল ও গ্যাস সহযোগিতা সম্পর্কিত মউ জেএসভি “বেলজারুবেঝস্টোরি” এবং ন্যাশনাল বিল্ডিংস কনস্ট্রাকশন কর্পোরেশন লিমিটেডের মধ্যে সম্পাদিত মউ জেএসসি বেলারুশিয়ান পটাশ কোম্পানি (বিপিসি) এবং ইন্ডিয়ান পটাশ লিমিটেড (আইপিএল)-এর মধ্যে সম্পাদিত মউ ভারত ও পর্তুগালের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার ক্ষেত্রে তিনিছিলেন এক স্থপতি-পুরুষ। এই শোকের মুহূর্তে আমাদের পূর্ণ সমর্থন ও সহায়তা নিয়ে আমরা রয়েছি পর্তুগালের সঙ্গেই। এই ধরনের একটি অনুষ্ঠানেরউদ্যোগ-আয়োজন এবং তাকে বিরাটভাবে সাফল্যমণ্ডিত করে তোলার জন্য যে প্রচেষ্টা ওসহায়তা করে এসেছেন মুখ্যমন্ত্রী শ্রী রামাইয়াজি ও তাঁর সরকার, সেজন্য তাঁদের আমিধন্যবাদ জানাই। আমিবিশেষভাবে স্বাগত জানাই পর্তুগালের প্রধানমন্ত্রী, সুরিনামের ভাইস প্রেসিডেন্ট এবংমালয়েশিয়া ও মরিশাসের মাননীয় মন্ত্রীবর্গকে। তাঁদেরসাফল্য এবং নিজেদের দেশে তথা সমগ্র বিশ্বে তাঁদের অর্জিত সুনাম ও সুখ্যাতি থেকেআমরা অনুপ্রেরণা লাভ করতে পারি। সমগ্র বিশ্বে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয়দের গর্ব, সাফল্য ওকঠোর শ্রমেরও প্রতিফলন ঘটেছে। বিদেশে বর্তমানে প্রবাসী ভারতীয়ের সংখ্যা ৩ কোটিরওবেশি। তাঁরা পদার্পণ করেছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশে। বিদেশে ভারতীয়দের বিশেষমূল্যবান সম্পদ বলে মনে করা হয় শুধুমাত্র সংখ্যার কারণেই নয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য,অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, সংযুক্ত আরব আমিরশাহী, কাতার, সিঙ্গাপুর, ফিজি, চিন,জাপান, দক্ষিণ কোরিয়া, কেনিয়া মরিশাস, সিসিলি দ্বীপপুঞ্জ এবং মালয়েশিয়া সহ বিশ্বেরবিভিন্ন দেশ সফরকালে আমি অসংখ্য প্রবাসী ভারতীয় ভাই-বোনদের সঙ্গে আলাপচারিতায়মিলিত হয়েছি। এর ফলে, ভারতের আর্থ-সামাজিক রূপান্তর প্রচেষ্টায় আরও বেশি করে যুক্তহওয়ার উৎসাহ, উদ্যম ও শক্তি সঞ্চারিত হয়েছে তাঁদের মধ্যে। অনাবাসীও প্রবাসী ভারতীয়দের অবদান ছড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন ক্ষেত্রে। তাঁদের মধ্যে অনেকেইরাজনীতি, বিজ্ঞান, চিকিৎসা, শিক্ষা, অর্থনীতি, সঙ্গীত, মানবতাবাদ, সাংবাদিকতা,ব্যাঙ্কের কাজকর্ম, প্রযুক্তি এবং আইনগত পেশার সঙ্গে বিশেষভাবে যুক্ত। এর বাইরেওরয়েছেন দেশের নামকরা তথ্যপ্রযুক্তিবিদরা। বন্ধুগণ,তাঁদের পেশা ও প্রেক্ষাপট নির্বিশেষে বিদেশে বসবাসকারী সকল ভারতীয়ের কল্যাণ ওনিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের অগ্রাধিকারের মধ্যেই পড়ে। এজন্য সমগ্র প্রশাসনিকব্যবস্থাটিকে আমরা আরও জোরদার করে তুলছি। প্রবাসীভারতীয়দের নিরাপত্তার বিষয়টি আমাদের কাছে সবথেকে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। যখনই কোন দেশে ভারতীয়রা বিপন্ন হয়ে পড়েন, আমরা ছুটে যাইতাঁদের নিরাপত্তা, উদ্ধার ও দেশে ফিরিয়ে আনার কাজে। ২০১৬-রজুলাই মাসে ‘সঙ্কটমোচন’ অভিযান চালিয়ে মাত্র ৪৮ ঘন্টার মধ্যে দক্ষিণ সুদানের ১৫০জন প্রবাসী ভারতীয়কে নিরাপদ দূরত্বে সরিয়ে আনতে পেরেছিলাম। তারও আগে, ইয়েমেনেরসঙ্কটজনক পরিস্থিতিতে সুষ্ঠুভাবে এবং ঘনিষ্ঠ সমন্বয় রক্ষার মাধ্যমে দ্রুত আমরানিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে আসতে পেরেছিলাম কয়েক হাজার ভারতীয় নাগরিককে। ২০১৪ এবং ২০১৬ –শেষের এই দুটি বছরে প্রায় ৫৪টি দেশ থেকে ৯০ হাজারেরও বেশি ভারতীয় নাগরিককে আমরাস্বদেশে ফিরিয়ে এনেছি। ভারতীয় সম্প্রদায়ের জন্য নির্দিষ্ট কল্যাণ তহবিল থেকেআপৎকালীন পরিস্থিতিতে ৮০ হাজারেরও বেশি প্রবাসী ভারতীয়কে আমরা সহায়তাদান করেছি। প্রত্যেকপ্রবাসী ভারতীয়ের জন্য আমাদের সুনির্দিষ্ট লক্ষ্য হল এই যে এমনভাবে কাজ করে যাওয়াযাতে তাঁরা কখনই মনে না করেন যে তাঁদের স্বদেশভূমি রয়েছে অনেক অনেক দূরে। ই-মাইগ্রেট পোর্টালটিতে বিদেশের নিয়োগ কর্তাদের নথিভুক্তিবাধ্যতামূলক করে তোলা হয়েছে। কর্মসংস্থানেরসুযোগ লাভের জন্য যে সমস্ত কর্মী বিদেশ যাত্রা করেন তাঁদের ক্ষোভ, অভিযোগ এবংআবেদন সম্পর্কে ব্যবস্থা নেওয়া হয় ‘ই-মাইগ্রেট’ এবং ‘মদত’ – এই অনলাইন মঞ্চগুলিরমাধ্যমে। বিদেশের কর্মসংস্থানের ক্ষেত্রে যে সমস্ত সংস্থা বেআইনিভাবে কাজকর্ম করেথাকে, তাদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থাও আমরা গ্রহণ করে থাকি। চার-পাঁচ প্রজন্ম আগে থেকেই যাঁরা বিদেশে বসবাসকরছেন, ভারতীয় বংশোদ্ভূত সেই সমস্ত মানুষ ওসিআই কার্ড পাওয়ার ক্ষেত্রে যে নানাধরণের অসুবিধার সম্মুখীন হন, সে সম্পর্কেও আমরা ওয়াকিবহাল। তাঁদের চিন্তা ওউদ্বেগের অংশীদার হিসেবে এই সমস্যার সমাধানে আমরা সচেষ্ট রয়েছি। আমিআনন্দের সঙ্গে ঘোষণা করছি যে এ দেশ থেকে যাঁরা বিদেশে স্থানান্তরিত হয়েছেন ওসিআইকার্ড পাওয়ার জন্য যাতে তাঁরা যোগ্য বলে বিবেচিত হন, সেই লক্ষ্যে আমরা নতুন পদ্ধতিও নথিগত ব্যবস্থা চালু করার কাজে সচেষ্ট রয়েছি। মরিশাসে বসবাসকারী ভারতীয়প্রজন্মগুলির জন্য এই কাজের মধ্য দিয়েই সূচনা হবে আমাদের এই বিশেষ কর্মসূচিটির।ফিজি, রিইউনিয়ন আইল্যান্ডস্‌, সুরিনাম, গুয়ানা এবং অন্যান্য ক্যারিবিয়ানরাষ্ট্রগুলিতে এই ধরনের অসুবিধা দূর করতে আমরা প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। শুধু তাই নয়, এইকর্মসূচির মাধ্যমে একজন প্রবাসী ভারতীয় ভারতের কোন একটি সংস্থায় এক থেকে তিন মাসপর্যন্ত কাজ করতে পারবেন। বন্ধুগণ,আমি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করি যে ভারতের সঙ্গে প্রবাসী ভারতীয়দের সংযোগ ও যোগাযোগনিরবচ্ছিন্ন থাকবে এবং তাতে সমৃদ্ধ হবে উভয় পক্ষই। বিদেশে বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়েরসদস্যদের সঙ্গে ভারত সরকারের যোগাযোগ ও কর্মপ্রচেষ্টার ক্ষেত্রে এই কেন্দ্রটি যেবিশেষ গুরুত্ব লাভ করতে চলেছে এ বিষয়ে আমি স্থির বিশ্বাসী। এর আওতায় এইপ্রথম প্রবাসী ভারতীয় তরুণদের ছ’টি গোষ্ঠী এই বছরটিতে ভারত সফর করছেন। আমিএকথা জানতে পেরে খুবই আনন্দিত যে এই প্রবাসী ভারতীয় তরুণদের মধ্যে ১৬০ জন আজ এখানেপ্রবাসী ভারতীয় দিবসের অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণের জন্য সমবেত হয়েছেন। এখানে আপনাদের মধ্যে অনেকেই রয়েছেন যাঁরাবাণিজ্য বা বিনিয়োগের কাজে যুক্ত হতে আগ্রহী। আবার এমন অনেকেই রয়েছেন যাঁরা‘স্বচ্ছ ভারত’ এবং ‘নমামি গঙ্গে’ সহ অন্যান্য কর্মসূচিগুলির সঙ্গে যুক্ত থাকতেস্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ বিজ্ঞান ভবনে কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্তসংস্থাগুলির এক সম্মেলনে অংশ নিয়েছেন। কর্পোরেট গভর্ন্যান্স, মানবসম্পদ পরিচালন, ফাইনান্সিয়াল রি-ইঞ্জিনিয়ারিং,উদ্ভাবন, প্রযুক্তি এবং ২০২২ সালের মধ্যে নতুন ভারতের দৃষ্টিকোণ বিষয়ে প্রধানমন্ত্রীরসামনে বিভিন্ন বিষয় বস্তু তুলে ধরা হয়। অনুষ্ঠানে ভাষণ দিয়ে প্রধানমন্ত্রী এই সমাবেশকে রাষ্ট্রায়ত্ত ক্ষেত্রের একনতুন সূচনা বলে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি জাতি গঠনের কাজে এবং স্বাধীনতাপরবর্তী সময়ে দেশের অর্থনীতিতে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির জন্য একই সঙ্গে মুনাফা এবং সামাজিকসুবিধাসৃজন, এই দুটি কাজই গুরুত্বপূর্ণ। রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির কর্মীদেরপ্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সব কর্মীদের কঠোর পরিশ্রম ছাড়া সমস্ত বিদ্যুৎবিহীন গ্রামে বিদ্যুতের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া এবং দরিদ্রদের রান্নার গ্যাসের সংযোগদেওয়ার মতো, সরকারের প্রধান লক্ষ্য পূরণ কোনও ভাবেই সম্ভব হ’ত না। প্রধানমন্ত্রী বলেন, শুধুমাত্র পুরনো দিনের কাজের অগ্রগতির কথা ভাবলেই চলবেনা, নতুন নতুন চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করার উদ্যোগও বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রীবলেন, একুশ শতকের কর্মপদ্ধতি মূল নীতিই হ’ল উদ্ভাবন ও উদ্যোগ। উৎসাহ, কল্পনা এবংপ্রতিষ্ঠান গঠনকে সাফল্যের তিনটি প্রধান চাবিকাঠি হিসাবে ধরতে হবে। নতুন ভারতের রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির সামনে তিনি পাঁচটি চ্যালেঞ্জের কথাউল্লেখ করেন : · ২০২২ সালেরমধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি কিভাবে তাদের ভূ-কৌশলগত কাজের পরিধিসর্বোচ্চ পর্যায়ে নিয়ে যেতে পারে? · ২০২২ সালেরমধ্যে কিভাবে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি দেশের আমদানি বাবদ ব্যয় হ্রাস করতেপারে? · ২০২২ সালেরমধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি কিভাবে উদ্ভাবন ও গবেষণার মেলবন্ধন ঘটাতেপারে? · ২০২২ সালেরমধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি কিভাবে তাদের সামাজিক দায়িত্ব বাবদ তহবিলসবচেয়ে ব্যবহার করবে? · ২০২২ সালেরমধ্যে ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি দেশের জন্য কোন্‌ উন্নয়নের আদর্শ তুলে ধরবে? প্রধানমন্ত্রীবলেন, বিশ্বের ৫০০টি বৃহত্তর কোম্পানির মধ্যে এক-চতুর্থাংশই কোনও না কোনও দেশেররাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থা। তিনি বলেন, ভারতীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি অন্যান্য দেশেররাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার সঙ্গে যোগাযোগের মাধ্যমে, বিদেশে বিনিয়োগের জন্য একটিসার্বিক রণকৌশল নিতে পারে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি ভারতেরপ্তানি বাবদ ব্যয় হ্রাস করার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিতে পারে। কেন্দ্রীয়রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির আধুনিক গবেষণা ও উন্নয়নের পরিকাঠামোর কথা তুলে ধরে তিনিবলেন, সিএসআইআর এবং আইসিএআর-এর মতো সংস্থাকে কাজে লাগিয়ে গবেষণা ও উদ্ভাবনের একটিঅখন্ড ব্যবস্থা গড়ে তোলা দরকার। এই প্রসঙ্গে তিনি সরকারি দপ্তর ও কেন্দ্রীয়রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির মধ্যে তথ্য বিনিময়ের ওপর জোর দেন। প্রধানমন্ত্রীকেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলির সামাজিক দায়বদ্ধতা বাবদ অর্থ ব্যয়কে প্রতি বছরবিষয়নির্দিষ্ট করে তোলার প্রস্তাব করেন। এই প্রসঙ্গে তিনি সামাজিক দায়বদ্ধতা বাবদঅর্থ স্কুলের শৌচালয় নির্মাণের কাজে লাগানোর সাফল্যের কথা তুলে ধরেন। উন্নয়নকামীজেলাগুলির জন্যও এই অর্থ ব্যয় করা যেতে পারে। এছাড়া, দক্ষতা উন্নয়নের জন্যওকেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি এই অর্থ ব্যয় করতে পারে। প্রধানমন্ত্রীবলেন, কেন্দ্রীয় রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি কাগজ বিহীন কাজের ব্যবস্থা, নগদ বিহীনলেনদেন এবং বর্জ্য পরিচালনের মতো অনেক ক্ষেত্রে আদর্শ হয়ে উঠতে পারে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী ৫ জানুয়ারী (শনিবার) ঝাড়খন্ড ও ওড়িশা সফর করবেন। ঝাড়খন্ডে প্রধানমন্ত্রী উত্তর কোয়েল (মন্ডল বাঁধ) প্রকল্পের পুনরুজ্জীবনের জন্য ভিত্তিপ্রস্তর স্হাপন উপলক্ষ্যে ফলকের আবরণ উন্মোচন এবং কনহর সোন পাইপলাইন সেচ প্রকল্পের সূচনা করবেন। প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার আওতায় নির্মিত ২৫ হাজার বাড়ির সুফলভোগীদের এক সমবেত ই-গৃহপ্রবেশ অনুষ্ঠান ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে তিনি প্রত্যক্ষ করবেন। এই উপলক্ষ্যে তিনি এক জনসভাতেও ভাষণ দেবেন। এরপর প্রধানমন্ত্রী ওড়িশায় যাবেন। একাধিক জাতীয় মহাসড়ককে চার লেন বিশিষ্ট করার কাজকর্মের সূচনা এবং ছয়টি পাসপোর্ট সেবাকেন্দ্রের উদ্বোধন করবেন। এছাড়াও তিনি টাটানগর থেকে বদমপাহাড় পর্যন্ত দ্বিতীয় যাত্রীবাহি ট্রেনের যাত্রা সূচনা করবেন। শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ে ভারতীয় ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এক বার্তায় তিনি বলেছেন, “শ্রীলঙ্কার বিরুদ্ধে ঐতিহাসিক সিরিজ জয়ের জন্য ভারতীয় ক্রিকেট দলকে অভিনন্দন। কাস্টম্‌স-এর ক্ষেত্রে ভারত ও কাতারের মধ্যে এক সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের প্রস্তাবে অনুমোদন দিল কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বে অনুষ্ঠিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আজ এই অনুমোদন দানের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। এই সহযোগিতা চুক্তি স্বাক্ষরের ফলে কাস্টমস্‌ সংক্রান্ত বেআইনি কাজকর্ম ও অপরাধ মোকাবিলা করা দুটি দেশের পক্ষেই সহজতর হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী আজ দক্ষিণ কোরিয়ায় বসবাসকারী ভারতীয় সম্প্রদায়ের উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন। সিওলে বসবাসকারী ভারতীয়রা তাঁকে উষ্ণ অভ্যর্থনা জানানোর জন্য প্রধানমন্ত্রী তাঁদের ধন্যবাদ দেন। ভারত ও কোরিয়ার মধ্যে শতাব্দী প্রাচীন যোগসূত্রের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী অযোধ্যার রানী সূর্যরত্নের প্রসঙ্গ তুলে বলেন, অযোধ্যা থেকে কয়েক হাজার কিলোমিটার পথ পাড়ি দিয়ে তিনি কোরিয়ার রাজার সঙ্গে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। দীপাবলি উদযাপন অনুষ্ঠানে কোরিয়ার ফার্স্ট লেডি কিম জুং সুক – এর অযোধ্যা সফরের কথাও শ্রী মোদী স্মরণ করেন। প্রধানমন্ত্রী আরও বলেন, দু’দেশের মধ্যে মৈত্রীর বন্ধনকে বৌদ্ধ ধর্ম আরও মজবুত করেছে। শ্রী মোদী বলেন, ভারতীয় সম্প্রদায়ের মানুষ কোরিয়ার সার্বিক উন্নয়ন, উদ্ভাবন ও গবেষণায় বিপুল অবদান রাখছেন জেনে তিনি অত্যন্ত আনন্দিত। প্রধানমন্ত্রী কোরিয়ায় যোগচর্চা ও ভারতীয় উৎসবগুলির জনপ্রিয়তার কথা বিশেষভাবে উল্লেখ করেন। ভারতীয় রন্ধনশৈলী দ্রুত সেদেশে জনপ্রিয় হচ্ছে বলে শ্রী মোদী জানান। সদ্য সমাপ্ত এশিয়ান গেম্‌স – এ কোরিয়ার কাবাডি খেলোয়াড়দের অসাধারণ সাফল্যেরও তিনি প্রশংসা করেন। সারা বিশ্ব জুড়ে ছড়িয়ে থাকা ভারতীয় সম্প্রদায়ের মানুষকে ভারতের দূত হিসাবে বর্ণনা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এদের কঠোর পরিশ্রম ও শৃঙ্খলার জন্য সারা বিশ্বে ভারতের মর্যাদা বেড়েছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন যে, ভারত এ বছর মহাত্মা গান্ধীর সার্ধ শতবার্ষিকী উদযাপন করছে। দক্ষিণ কোরিয়ার সঙ্গে ভারতের সম্পর্ক ক্রমশ মজবুত হচ্ছে বলে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, উভয় দেশই এই অঞ্চলের শান্তি, স্থিতিশীলতা ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে একজোট হয়ে কাজ করছে। প্রধানমন্ত্রী ভারতের আর্থিক অগ্রগতির কথা বিশদে ব্যাখ্যা করে এই ক্ষেত্রে যে সকল পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, সেকথাও উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ভারত শীঘ্রই ৫ ট্রিলিয়ন ডলারের অর্থনীতি হয়ে উঠবে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিভিন্ন ক্ষেত্রে অসাধারণ সাফল্যের দরুণ ভারতের মর্যাদা ক্রমশ বৃদ্ধি পাচ্ছে। এ প্রসঙ্গে তিনি দরিদ্র মানুষের স্বার্থে বিনামূল্যে চিকিৎসা পরিষেবা, বিশ্বের সুউচ্চ মূর্তি ‘একতার মূর্তি’ এবং ডিজিটাল ভারত উদ্যোগের কথাও উল্লেখ করেন। দূষণমুক্ত ও পরিবেশ-বান্ধব শক্তি উৎপাদনের ক্ষেত্রে ভারতের সাফল্যের কথা উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী আন্তর্জাতিক সৌরজোট প্রসঙ্গের অবতারণা করেন। শ্রী মোদী বলেন, ভারতে এখন এক নতুন উৎসাহ ও উদ্দীপনা তৈরি হয়েছে। আগামীকাল তিনি ভারতবাসী ও প্রবাসী ভারতীয়দের পক্ষ থেকে সিওল শান্তি পুরস্কার গ্রহণ করবেন বলে জানান। প্রয়াগরাজে অনুষ্ঠিত কুম্ভমেলার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে শ্রী মোদী বলেন, এবারের কুম্ভমেলায় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার ক্ষেত্রে যে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে, সমগ্র বিশ্ব তার প্রশংসা করছে। প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী পবিত্র ঈদ-উল-জোহা উপলক্ষে বিশ্বের মুসলিম সম্প্রদায়কে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভারত এলএমডিসি-র এই বৈঠক আয়োজন করে, যা এখানে গত দুদিন ধরে অনুষ্ঠিত হয় | প্রধানমন্ত্রী প্রতিনিধিদের সংগে আলাপচারিতায় বলেন, জলবায়ু পরিবর্তন সম্বন্ধীয় চ্যালেঞ্জ সম্পর্কে বিশ্ব এখন ওয়াকিবহাল, কিন্তু বিশ্বকে জলবায়ুর বিচার নীতি সম্পর্কেও সচেতন করতে হবে । প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশজুড়ে, উন্নয়নশীল এবং উন্নত দেশে, পরিবেশ বিষয়ে একটি অভিন্ন পাঠ্যক্রম স্কুলে পড়ানো উচিৎ, যাতে নতুন প্রজন্ম আবহাওয়া পরিবর্তন মোকাবিলায় অভিন্ন লক্ষ্য নিয়ে বড় হয়ে উঠতে পারে। নিজস্ব উন্নয়নের ধারা বজায় রেখে জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবিলা করতে উন্নয়নশীল দেশগুলিকে পরিচ্ছন্ন প্রযুক্তি দেওয়ার বিষয়ে উন্নত বিশ্বের প্রতিশ্রুতি পূরণ করার এবং আর্থিক সহায়তা দেওয়ার ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী জোর দেন। তিনি বলেন উন্নত বিশ্বকে যেমন দূষণ নির্গমন কমাবার লক্ষ্য রাখতে হবে, তেমনি উন্নয়নশীল দেশকে কাজ করতে হবে উৎসাহ দেওয়ার লক্ষ্যে রাখতে হবে, যেমন পুন:নবিকৃত শক্তি এবং পরিবেশ বান্ধব আবাসন নির্মান। প্রধানমন্ত্রী জীবনযাত্রায় পরিবর্তন এনে শক্তি ব্যবহার কমাতে আহবান জানান । তিনি বলেন জলবায়ু বিষয়ে ভারত এলএমডিসি-র সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিযে কাজ করে যাবে । প্রধানমন্ত্রী শ্রী মোদী এবং বিদেশ মন্ত্রী শ্রীমতী সুষমা স্বরাজ ঐ প্রতিনিধিদের সঙ্গে এক ঐতিহাসিক গ্রুপ ছবিতে সামিল হন। প্রতিনিধিদের উদ্দেশে ভাষণে প্রধানমন্ত্রী বলেন, তাঁদের সঙ্গে মিলিত হতে পেরে তিনি আনন্দ বোধ করছেন। তিনি আরও বলেন, কুম্ভ মেলায় না এলে এই মেলার মহান ঐতিহ্য যথাযথ উপলব্ধি করা অসম্ভব। হাজার বছর ধরে অবিচ্ছিন্নভাবে মহান এই ঐতিহ্য ধারার মতো বয়ে চলেছে। প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুম্ভ মেলা সামাজিক সংস্কার এবং আধ্যাত্মিকতার এক উজ্জ্বল মেলবন্ধন। এই মেলা ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা রচনা এবং অগ্রগতির ওপর নজর রাখার ক্ষেত্রে আধ্যাত্মিক গুরু এবং সমাজ সংস্কারকদের কাছে আলাপ-আলোচনার মঞ্চ হয়ে উঠেছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে আগত প্রতিনিধিদের ধন্যবাদ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, কুম্ভ মেলার সাফল্যের ক্ষেত্রে তাঁদের অংশগ্রহণও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রধানমন্ত্রী, ভারতীয় সংসদীয় নির্বাচনকে “গণতন্ত্রের কুম্ভ” হিসেবে বর্ণনা করেন। তিনি বলেন, কুম্ভ মেলার মতো সম্পূর্ণ নিরপেক্ষতা সমেত ভারতীয় সংসদীয় নির্বাচনেও বৃহত্তর অর্থে সমগ্র বিশ্বের কাছে প্রেরণার উৎস হয়ে উঠতে পারে। নতুন দিল্লীতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৃহস্পতিবারের (৬ ডিসেম্বর) বৈঠকে ডাক ক্ষেত্রে ভারত-জাপান সহযোগিতা সংক্রান্ত সমঝোতাপত্রে কর্মপরবর্তী অনুমোদন জানানো হল। যোগদা সৎসঙ্গ সোসাইটি অফ ইন্ডিয়া’র শতবর্ষ পূর্তি উপলক্ষে আজ আনুষ্ঠানিকভাবে এক স্মারক ডাকটিকিট প্রকাশ করেন প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী। এই উপলক্ষে রাজধানীর বিজ্ঞান ভবনে আয়োজিত এক অনুষ্ঠানে স্বামী পরমহংস যোগানন্দের ভুয়সী প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রীবলেন, যে পথের সন্ধান তিনি দিয়ে গেছেন, তা শুধুমাত্র মুক্তির নয়, তা হল‘অন্তর্যাত্রা’র। শ্রী মোদীবলেন, স্বামী পরমহংস যোগানন্দ তাঁর বাণী প্রচারের স্থান হিসেবে চিহ্নিত করেছেন ভারতকে।এই দেশটির সঙ্গেই তিনি বরাবর নিজেকে যুক্ত রেখেছেন। নয়া দিল্লি: 0৩ জানুয়ারি: প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদিরপৌরহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা বুধবার স্থল-সীমান্ত পারাপারে ভারত ও মায়ানমারেরমধ্যে চুক্তির অনুমোদন দিল| প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী বলেছেন, ভারতের সংবিধান কেবল আইনমাত্র নয়, এটি এমনই একটি সামাজিক দলিল, যখনই আমাদের নির্দেশ ও প্রেরণার প্রয়োজন হয় তখনই আমরা যার আশ্রয় নিতে পারি। সংবিধান দিবস-এর স্মরণে এবং সংবিধানের রূপকার ডঃ বি আর আম্বেদকরের ১২৫-তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে রাজ্যসভায় আয়োজিত এক আলোচনাসভায় তিনি বক্তব্য রাখছিলেন। প্রধানমন্ত্রী বলেন, সংবিধান আমাদের ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যাওয়ার শক্তি যোগায়, আর বলেন, সংবিধান রচনাকারী গণপরিষদের সকল সদস্যদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানোর এক আদর্শ উপলক্ষ। প্রধানমন্ত্রী বলেন, দেশ ডঃ বাবাসাহেব আম্বেদকরের দৃষ্টান্তমূলক অবদানকে উপেক্ষা করতে বা ভুলে যেতে পারে না। এক ভারত, শ্রেষ্ঠ ভারত সম্পর্কে তাঁর স্বপ্নের রূপরেখা, যা তিনি সর্দার প্যাটেলের জন্মবার্ষিকীতে ‘একতার জন্য দৌড়’ অনুষ্ঠানে প্রথম তুলে ধরেছিলেন, সেকথা বর্ণনা করেন। প্রবীণ সাংবাদিক ও রাজ্যসভার প্রাক্তন সদস্য কুলদীপ নায়ারের মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শ্রী নরেন্দ্র মোদী শোক প্রকাশ করেছেন। “কুলদীপ নায়ার ছিলেন আমাদের যুগের একজন বড় মাপের বিদ্বান। জরুরি অবস্থার বিরুদ্ধে তাঁর কঠোর অবস্থান, এক উন্নত ভারত গঠনের প্রতি তাঁর কাজ ও দায়বদ্ধতা, মানুষ সবসময় মনে রাখবেন। আমার বিশেষবন্ধু প্রধানমন্ত্রী শিনজো আবে-কে ভারতে, বিশেষ করে গুজরাটে স্বাগত জানানোর সুযোগ পেয়েআমি আনন্দিত। গতকাল আমি তাঁকে সঙ্গেনিয়ে সাবরমতী আশ্রম পরিদর্শনে গিয়েছিলাম। আজ আমরা দু’জনেই পরিদর্শন করেছি ডান্ডিকুটীর। ভারত-জাপানসম্পর্কের অতুলনীয় বৈশিষ্ট্যটি হল পারস্পরিক আস্থা ও বিশ্বাস, পরস্পরের উদ্বেগ ওস্বার্থের বিষয়গুলির উপলব্ধি এবং উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা ও মতবিনিময় প্রক্রিয়াকেঅব্যাহত রাখার প্রচেষ্টা। গত বছরআমার জাপান সফরকালে পরমাণু শক্তির শান্তিপূর্ণ ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এক ঐতিহাসিকচুক্তির মাধ্যমে যুক্ত হয়েছি আমরা। এই বিষয়টিকে সর্বতোভাবে সমর্থন জানানোর জন্যআমি কৃতজ্ঞতা জানাই জাপানের অধিবাসী, সেখানকার সংসদ এবং বিশেষ করে প্রধানমন্ত্রীআবে-কে। বিশুদ্ধ জ্বালানি এবং জলবায়ু পরিবর্তনের মতো বিষয়গুলিতে আমাদের পারস্পরিকসহযোগিতার ক্ষেত্রে এই চুক্তিটি এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। পূর্ববর্তীবছরের তুলনায় ২০১৬-১৭ অর্থ বছরে ভারতে জাপানি বিনিয়োগের মাত্রা ৮০ শতাংশ বৃদ্ধিপেয়ে দাঁড়িয়েছে ৪.৭ বিলিয়ন মার্কিন ডলারে। জাপান বর্তমানে ভারতে তৃতীয় বৃহত্তমবিনিয়োগকারী একটি দেশ। ভারতের অর্থনৈতিক বিকাশ এবং সোনালী ভবিষ্যৎ সম্পর্কে জাপানযে কতটা আশাবাদী এবং আত্মবিশ্বাসী, এই ঘটনাই তার সুস্পষ্ট প্রমাণ। বর্তমানে এইবিনিয়োগের পথ ধরে আগামীদিনগুলিতে ভারত ও জাপানের জনসাধারণের মধ্যে পারস্পরিকসম্পর্ক যে ক্রমবর্ধমান বাণিজ্যিক সম্পর্কের মতোই উত্তরোত্তর প্রসার লাভ করবে, সেবিষয়ে কোন সন্দেহ নেই। এর উদ্দেশ্য হল, ভারতে বসবাসকারীজাপানের অধিবাসীদের কাছে জাপান থেকে পাঠানো তাঁদের প্রিয় খাদ্যসামগ্রী পৌঁছে দেওয়া।একইসঙ্গে, জাপানের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের কাছে আমি অনুরোধ জানাব ভারতে আরও বেশি করেজাপানি রেস্তোরাঁ খোলার জন্য। ভারত বর্তমানে বিভিন্ন ক্ষেত্রে এক বিরাট পরিবর্তনেরমধ্য দিয়ে চলেছে। বাণিজ্যিক কাজকর্ম সহজতর করে তোলা, দক্ষ ভারত গঠন করা, করসংস্কার কর্মসূচি কিংবা ‘মেক ইন ইন্ডিয়া’ উদ্যোগ – সর্বক্ষেত্রেই এক পূর্ণরূপান্তরের পথে এগিয়ে চলেছে ভারত। এই ঘটনা জাপানের বাণিজ্য প্রতিনিধিদের কাছে একবিরাট সুযোগ এনে দিয়েছে। আমি বিশেষভাবে আনন্দিত যে বহু জাপানি শিল্প সংস্থা আমাদেরপ্রধান প্রধান কর্মসূচিগুলির সঙ্গে নিবিড়ভাবে যুক্ত রয়েছে। আমাদেরমধ্যে আজ যে সমস্ত আলাপ-আলোচনা এবং চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে তা সবক’টি ক্ষেত্রেইভারত-জাপান সম্পর্ককে আরও শক্তিশালী করে তুলবে বলেই আমার দৃঢ় বিশ্বাস। এটুকুবক্তব্য রেখেই আমি আরও একবার আন্তরিকভাবে স্বাগত জানাই প্রধানমন্ত্রী আবে এবং তাঁরউচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি তথা সফরসঙ্গীদের। আরিগাতোগোজাইমাস (ধন্যবাদ) প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর পৌরোহিত্যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভার বৈঠকে দিল্লির অননুমোদিত কলোনিগুলির বাসিন্দাদের মালিকানা দেওয়ার বা হস্তান্তর করার এবং মর্টগেজের অধিকার দেওয়ার প্রক্রিয়া নির্ধারণ করতে সুপারিশ কমিটি গঠনের প্রস্তাব অনুমোদিত হল। 1. দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির ভাইস চেয়ারম্যান 2. কেন্দ্রীয় সরকারের আবাসন এবং নগর বিষয়ক মন্ত্রকের অতিরিক্ত সচিব 3. দিল্লি সরকারের মুখ্যসচিব 4. দিল্লির পূর্ব, উত্তর এবং দক্ষিণ মিউনিসিপাল কর্পোরেশনের কমিশনাররা 5. দিল্লি আর্বান আর্টস কমিশনের চেয়ারম্যান 6. দিল্লির আর্বান ট্রান্সপোর্ট স্কুল অফ প্ল্যানিং অ্যান্ড আর্কিটেকচারের অধ্যাপক 7. ন্যাশনাল ইনস্টিটিউট অফ আর্বান অ্যাফেয়ার্সের আর্বান প্ল্যানার অ্যান্ড ডিরেক্টর 8. দিল্লি দমকলের প্রাক্তন অধিকর্তা এবং 9. সদস্য সচিব হিসেবে দিল্লি ডেভেলপমেন্ট অথরিটির প্রিন্সিপাল কমিশনার এই কমিটি ৯০ দিনের মধ্যে রিপোর্ট দেবে কেন্দ্রীয় আবাসন এবং নগর বিষয়ক মন্ত্রককে।