Serial,Title,Date,Author,News 1015,নগদ অর্থসঙ্কটে বেসরকারি ১০ ব্যাংক,2021-08-19,জামাল উদ্দীন,ব্যাংকিং খাতে তারল্য প্রবাহ বাড়লেও বেসরকারি খাতের ১০টি ব্যাংকে ক্যাশ ফ্লো সংকট কাটছে না। এ সময়েও এসব ব্যাংকে নগদ অর্থের সংকটকে সন্দেহের চোখে দেখছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের একটি সূত্র। এই সূত্রমতে ঋণ বিতরণে অনিয়মসহ স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার অভাবেই এমনটি ঘটেছে। নইলে যেখানে নগদ অর্থ সরবরাহ বৃদ্ধি পাওয়ায় অধিকাংশ ব্যাংকেই এখন অলস অর্থের পাহাড়। এই অলস অর্থ বিনিয়োগযোগ্য করতে বাংলাদেশ ব্যাংক বিলের মাধ্যমে বিপুল অর্থ তুলে নিয়েছে। সেখানে নগদ অর্থসংকটে থাকা মানেই ব্যবস্থাপনা ও পরিচালনাগত দুর্বলতা রয়েছে। সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরাও একই মত ব্যক্ত করেছেন। তাদের মতে সার্বিকভাবে এই পরিস্থিতি ব্যাংকগুলোর এক ধরনের সংকটের ইঙ্গিত দিচ্ছে। এসব ব্যাংকের প্রতি মানুষের আস্থা কম। এসব ব্যাংক ঠিকমত পরিচালিত হচ্ছে না। বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের নির্বাহী পরিচালক ড. আহসান এইচ মনসুর বলেন যেখানে অন্যান্য ব্যাংকের তারল্য উদ্বৃত্ত রয়েছে সেখানে তারল্য সংকটে থাকা মানে এসব ব্যাংকের কোথাও কোনো মিসম্যাচ রয়েছে। হয়তো সঠিক তথ্য দিচ্ছে না। কিংবা টাকা অন্য কোথাও খাটাচ্ছেএমনটিও হতে পারে।সূত্রমতে যে ১০টি ব্যাংক নগদ অর্থসংকটে রয়েছে সেগুলো হচ্ছেইস্টার্ন ব্যাংক এবি ব্যাংক এক্সিম ব্যাংক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামি ব্যাংক মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক এনআরবিসি ব্যাংক প্রিমিয়ার ব্যাংক স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ট্রাস্ট ব্যাংক এবং ইউসিবি। চলতি বছরের জুন পর্যন্ত এসব ব্যাংকের প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকার ঋণাত্মক ক্যাশ ফ্লো রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে বেশি খারাপ অবস্থা ইস্টার্ন ব্যাংকের। তার পরেই এবি ব্যাংকের অবস্থান। বাংলাদেশ ব্যাংক সূত্র জানায় বর্তমানে করোনা পরিস্থিতির কারণে দেশে বিনিয়োগ স্থবিরতা বিরাজ করছে। যে কারণে ব্যাংকগুলোর বিনিয়োগ কমেছে। বেড়েছে তারল্য প্রবাহ। এই উদ্বৃত্ত তারল্য ব্যবসায় বিনিয়োগ করতে না পারায় অলস পড়ে আছে। এ অবস্থায় বাংলাদেশ ব্যাংক বিকল্প হিসাবে বিল ক্রয়ের মাধ্যমে ব্যাংকগুলোকে কিছু সুবিধা দিয়েছে। আবার কোনো কোনো ব্যাংক শেয়ারবাজারে বিনিয়োগও বাড়িয়েছে। সাম্প্রতিককালে ব্যাংকগুলোর পরিচালনাগত মুনাফার বড় একটি অংশই এসেছে শেয়ারবাজারের বিনিয়োগ থেকে। তথাপি কিছু ব্যাংক এ সময়ে তারল্য সংকটে ভুগছে। এসব ব্যাংকগুলো সঠিকভাবে পরিচালিত হচ্ছে না। অদক্ষ ব্যবস্থাপনা কিংবা পরিচালনা পর্ষদের অযাচিত হস্তক্ষেপ পরিচালকদের বেনামি ঋণ সমস্যাগুলো রয়েছেই। বিশেষজ্ঞরা বলেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নিবিড় পরিদর্শন করা হলে মূল সমস্যা বের হয়ে আসবে। আমানতকারীদের স্বার্থ নিশ্চিত করতে হলে তদারকির বিকল্প নেই। কেননা দেশের ব্যাংকিং খাতে এখন সুশাসনের অভাব প্রকট। ব্যাংকিং খাত সঠিকভাবে পরিচালিত না হলে সার্বিক অর্থনীতির জন্য তা নেতিবাচক প্রভাব বয়ে আনবে। তাদের মতে ২ লাখ ৩১ হাজার কোটি টাকা উদ্বৃত্ত তারল্যের মধ্যে আলোচ্য ব্যাংকগুলোর অবস্থা অবশ্যই পর্যালোচনার দাবি রাখে। ব্যাংকগুলো হয়তো বেনামি ঋণ দিয়ে তা আদায় করতে পারছে না। কিংবা সঠিক তথ্য প্রকাশ করছে না। করোনার কারণে ব্যাংকগুলোর আদায়ের হারও কম সেটিও বিবেচনায় নেওয়া যেতে পারে।ইত্তেফাকএমএএম