প্রতি ১০ জন গর্ভবতী নারীর মধ্যে ৮ জনেরই গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বা বমি হয় অথবা একসাথে দুটিই হয় এটাকে অনেক সময় মর্নিং সিকনেস বলা হয়ে থাকে যদিও এটি যে কেবল সকালেই হবে এমন কোন ব্যাপার নেইবেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যাগুলো কমে যায় বা একেবারে চলে যায় তবে কেউ কেউ আরও বেশিদিন ধরে এই সমস্যায় ভুগতে পারেনঅনেকের এত বেশি বমি হয় যে তারা যেসব খাবার খান এমনকি যা পান করেন তাই বমি করে বের ফেলেন ফলে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই অতিরিক্ত বমি ভাব ও বমি হওয়াকে বলা হয় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম (Hyperemesis Gravidarum) এবং এমন হলে অনেকেরই হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়েঘনঘন বমি হওয়ার কারণে পেটে একেবারেই খাবার রাখতে না পারলে ডাক্তারের সাথে বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে দ্রুত যোগাযোগ করুন অথবা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে যান অতিরিক্ত বমি হলে পানিশূন্যতা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় তাই দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন গর্ভাবস্থার সাধারণ বমি ভাব বা বমির তুলনায় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম অনেক বেশি ক্ষতিকর এর উপসর্গগুলো হল – দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র বমি ভাব ও বমি হওয়াপানিশূন্য হয়ে পড়া পানিশূন্যতার উপসর্গগুলো হল অতিরিক্ত পানি পিপাসা অনুভব করা ও ক্লান্ত বোধ করা মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা লাগা ঠিকমত প্রস্রাব না হওয়া গাঢ় হলুদ রঙের ও কড়া গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হওয়া ওজন কমে যাওয়া দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় রক্তচাপ কমে যাওয়া গর্ভাবস্থার সাধারণ বমি অর্থাৎ মর্নিং সিকনেসের মত এটি ১৬ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে ভালো নাও হতে পারে ২০ সপ্তাহে কিছু উপসর্গ কমলেও আপনার সন্তানের জন্ম হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যা থেকে যেতে পারে অতিরিক্ত বমি ভাব ও বমি হলে ডাক্তারের সাথে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে যোগাযোগ করুন দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নিলে তা আপনার পানিশূন্যতা ও ওজন কমে যাওয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে আরও কিছু সমস্যার কারণে অতিরিক্ত বমি ভাব ও বমি হতে পারে ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা করে আপনার বমির সঠিক কারণ নির্ণয় করার চেষ্টা করবেন হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম এর সঠিক কারণ কি অথবা কেন এটি কেবল কয়েকজনকে প্রভাবিত করে বাকিদের করে না তা জানা যায় নি কিছু বিশেষজ্ঞের মতে গর্ভাবস্থায় দেহে হরমোনের যে পরিবর্তন হয় তার সাথে এর সম্পর্ক রয়েছেকিছু গবেষণায় দেখা গেছে একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এ রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে অর্থাৎ আপনার মা বা বোনের যদি গর্ভাবস্থায় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম হয়ে থাকে তাহলে আপনারও এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকেআগের কোন গর্ভাবস্থায় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম হয়ে থাকলে পরবর্তীতেও এটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই আগে থেকেই এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম এর উপসর্গগুলো কমানোর জন্য কিছু ওষুধ আছে যা গর্ভাবস্থায় এমনকি প্রথম ১২ সপ্তাহেও ব্যবহার করা যায় এর মধ্যে রয়েছে বমির ওষুধ ভিটামিন ও স্টেরয়েড এগুলো আলাদাভাবে অথবা একসাথেও দেয়া হতে পারেআপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ওষুধটি খুঁজে বের করার জন্য আপনার ডাক্তার আপনাকে বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে দেখতে পারেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ফার্মেসি থেকে নিজে নিজে কোন ওষুধ খাবেন না বমি ভাব ও বমি নিয়ন্ত্রণে না আসলে আপনাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে যেন ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা করে আপনার ও আপনার সন্তানের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেন আপনার শিরায় সরাসরি স্যালাইন দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে আপনার বমি যদি তীব্র হয় তাহলে বমির ওষুধও শিরা বা পেশিতে দিতে হতে পারে হাইপারএমেসিস এর কারণে আপনি অনেক অসুস্থ বোধ করতে পারেন কিন্তু সঠিক চিকিৎসা করা হলে এটি আপনার সন্তানের তেমন কোন ক্ষতি করে না তবে এর কারণে গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন কমে গেলে জন্মের সময় আপনার সন্তানের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে বমি অথবা বমি ভাব ছাড়া হাইপারএমেসিস গ্রাভিডেরামের আরও কিছু উপসর্গ দেখা যেতে পারে যেমন গন্ধ বা ঘ্রাণের অনুভূতি অনেক বেড়ে যাওয়া অতিরিক্ত লালা তৈরী হওয়া পানিশূন্যতার কারণে মাথাব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া অতিরিক্ত বমি ভাব ও বমি আপনার জীবনকে এমন এক সময় প্রভাবিত করে যখন আপনি আপনার অনাগত সন্তানের অপেক্ষায় আছেনতাই এই সমস্যা আপনাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রভাবিত করতে পারে এসব উপসর্গের সাথে পেরে ওঠা অনেক সময় কষ্টকর মনে হতে হয় চিকিৎসা না করলে হাইপারএমেসিস থেকে মানসিক অবসাদ খাদ্যনালী ছিঁড়ে যাওয়ার মত অনেক রকম জটিলতা দেখা দিতে পারে তীব্র বমির কারণে আপনার দৈনন্দিন কাজ যেমন অফিসে যাওয়া এমনকি বিছানা থেকে ওঠাও কঠিন হয়ে পড়তে পারেঅত্যন্ত অসুস্থতা ও ক্লান্তি ছাড়া আপনার আরও কিছু সমস্যা হতে পারে যেমন রাস্তায় বমি করতে হবে এ কথা চিন্তা করেই বাইরে বা বাসা থেকে বেশি দূরে যেতে চিন্তিত বোধ করতে পারেন আপনি ঠিক কেমন অনুভব করছেন তা কেউ বুঝতে পারবে না মনে করে নিজেকে একা বোধ করতে পারেন কেন আপনার সাথেই এমন হচ্ছে তা ভেবে বিভ্রান্ত বা বিষণ্ণ বোধ করতে পারেন এভাবে চলতে থাকলে গর্ভাবস্থার বাকি সময়টুকু কিভাবে কাটবে তা নিয়ে অনিশ্চিত বোধ করতে পারেনআপনি যেমনই অনুভব করুন কখনোই এ অনুভূতিগুলো চেপে রাখবেন না আপনার ডাক্তারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলুন আপনার কেমন লাগছে ও এ রোগ আপনার জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করছে তা বলুন আপনি চাইলে আপনার স্বামী পরিবার ও বন্ধুদের সাথেও এ ব্যাপারে কথা বলতে পারেন এছাড়া হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম হয়েছে এমন কারো সাথে কথা বলার সুযোগ হলে তার সাথেও কথা বলতে পারেনমনে রাখবেন গর্ভাবস্থার সাধারণ বমির চেয়ে হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম অনেক বিপজ্জনক আপনার কোন কাজের কারণে এমন হচ্ছে অথবা কিছু না করার কারণে এমন হচ্ছে এমন কোন ব্যাপার নয় আর এর জন্য আপনার অবশ্যই চিকিৎসা প্রয়োজন হাইপারএমেসিস এর কারণে পানিশূন্যতা হয় তাই রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার প্রবণতা (ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস) বেড়ে যায় যদিও এই ঘটনা খুবই বিরল গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ নারীরই ঘুমের সমস্যা দেখা যায় এর মধ্যে রয়েছে রাতে ঘুম না আসা বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া অথবা সঠিক সময়ে ঘুম আসলেও অনেক তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে জেগে ওঠা গবেষণায় দেখা গিয়েছে গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুম না হওয়ার সাথে মা ও শিশুর নানান স্বাস্থ্য জটিলতার সম্পর্ক থাকতে পারেগর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ নারীরই ঘুমের সমস্যা দেখা যায় এর মধ্যে রয়েছে রাতে ঘুম না আসা বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া অথবা সঠিক সময়ে ঘুম আসলেও অনেক তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে জেগে ওঠা গবেষণায় দেখা গিয়েছে গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুম না হওয়ার সাথে মা ও শিশুর নানান স্বাস্থ্য জটিলতার সম্পর্ক থাকতে পারেএ ছাড়াও ঘুমের সমস্যা থেকে দিনের বেলায় বেশি ক্লান্ত লাগতে পারে এবং কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে অসুবিধা হতে পারে কিছু সহজ কৌশল অনুসরণ করলে আপনি গর্ভকালীন সময়ে ঘুমের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে বিভিন্ন হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে এসবের পাশাপাশি শারীরিক মানসিক ও আচরণগত নানান পরিবর্তন আসে এই পরিবর্তনগুলোর সাথে তাল মেলাতে গিয়ে অনেকসময় ঘুমের সমস্যা হতে পারেগর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে আপনার পেটের আকারও বাড়তে থাকে পেট বড় হয়ে যাওয়ার কারণে আরামদায়ক অবস্থানে ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে এটিও কখনো কখনো অনিদ্রার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে গর্ভকাল যত বাড়ে ঘুমের সমস্যাও তত বাড়তে পারে বিশেষ করে গর্ভাবস্থার একেবারে শেষের সপ্তাহগুলোতে পেটের আকারের জন্য আরাম করে ঘুমানো বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে তবে এই বিষয়ে বেশি দুশ্চিন্তা না করে যতটুকু সম্ভব বিশ্রাম নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবেওপরের কারণগুলোর পাশাপাশি সাধারণ সময়ের কিছু কমন উপসর্গের কারণেও গর্ভাবস্থায় ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে যেমন ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বুক জ্বালাপোড়া বমি বমি ভাব পিঠ ব্যথা গর্ভের শিশুর নড়াচড়া পা কামড়ানো অতিরিক্ত চিন্তা ও স্ট্রেস দুঃস্বপ্ন স্থূলতা শ্বাসকষ্ট রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম অথবা অস্থিরতা থেকে ঘন ঘন পা নাড়ানো সাধারণত ৭–৯ ঘণ্টার ঘুমকেই আদর্শ বলে ধরা হয় এর চেয়ে কম ঘুম হলে সেটি আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারেপর্যাপ্ত ঘুম না হলে দিনে ক্লান্তি ও বেখেয়ালি বোধ হতে পারে ফলে দৈনন্দিন কাজ করতে সমস্যা তৈরি হতে পারেঘুমের সমস্যা হলে প্রসবের সময়ে সিজারিয়ান অপারেশনের প্রয়োজন বেড়ে যেতে পারে এ ছাড়া অনিদ্রার সাথে সঠিক সময়ের আগে প্রসব হয়ে যাওয়ার মতো প্রসব সংক্রান্ত জটিলতা প্রিএক্লাম্পসিয়া ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে এসবের পাশাপাশি জন্মের পর ১ মাস বয়সে শিশুর ঘুম ও বেশি কান্নাকাটি করার সাথেও মায়ের অনিদ্রার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে তাই অন্যান্য সময়ের মতো গর্ভাবস্থায়ও মায়ের পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ ঘুম ঠিকমতো না হওয়া নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করলে সেটি ঘুমাতে আরও বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারে এজন্য এটি নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে নিচের সহজ ও কার্যকর পরামর্শগুলো মেনে চলতে পারেন এগুলো আপনার ঘুমের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে ঘুমানোর পরিবেশঘুমানোর জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বেছে নিন যেই রুমে ঘুমাবেন সেটি অন্ধকার ও আরামদায়ক রাখার চেষ্টা করুন অতিরিক্ত গরম ঠান্ডা অথবা উজ্জ্বল আলোতে ভালোমতো ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারেঘুমানোর সময়ে ঘরে যাতে কোনো ধরনের আলো না আসে এজন্য জানালায় ভারী পর্দা ব্যবহার করতে পারেন এ ছাড়াও প্রয়োজন হলে ঘুমানোর সময় চোখে আই মাস্ক ও কানে ইয়ার প্লাগ ব্যবহার করতে পারেন আই মাস্কের পরিবর্তে চোখের ওপর ছোটো কোনো কাপড় রেখেও ঘুমাতে পারেনঘুমানো অথবা বিশ্রাম নেওয়া ছাড়া বিছানায় অন্য কিছু করা পরিহার করুন বিছানা শুধুমাত্র ঘুমানোর জন্যই ব্যবহার করুন বিছানায় টিভি দেখা ফোন চালানো অথবা পড়ার অভ্যাস থাকলে সেটি বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন এসব কাজ টেবিলচেয়ার অথবা সোফায় বসে করুন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত বিছানার কাছে না যাওয়ার চেষ্টা করুনঘুমানোর আগে টিভিমোবাইল দেখা পরিহার করুন ঘুমাতে যাওয়ার আগে স্মার্টফোন ট্যাবলেট টিভি অথবা কম্পিউটার—এ ধরনের ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বন্ধ রাখুন এগুলোর উজ্জ্বল আলো ঘুম আসতে বাধা দিতে পারে চেষ্টা করুন আপনার ঘুমানোর রুমে টিভি অথবা কম্পিউটার না রাখতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোন বিছানা থেকে দূরে রেখে এরপর ঘুমাতে যেতে পারেন ঘুমানোর নিয়মআরামদায়ক অবস্থানে ঘুমান গর্ভাবস্থায় ঘুমের অবস্থান নিয়ে কখনো কখনো আপনার সমস্যা হতে পারে এসময়ে পেট বড় হয়ে যাওয়ার কারণে উপুড় হয়ে ঘুমানো যায় না আবার চিৎ হয়ে ঘুমালে নানান ক্ষতি হতে পারেবিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের পর থেকে চিৎ হয়ে শোয়ার ফলে জরায়ুতে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হতে পারে ফলে আপনার মাথা ঘুরাতে পারে—এমনকি শিশুর শরীরে রক্ত প্রবাহ কমে গিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এজন্য এসময়ে একপাশ হয়ে অর্থাৎ ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমালে সেটি সবচেয়ে ভালো ঘুমের সময় একটি অথবা দুটো হাঁটুই ভাঁজ করে রাখতে পারেন পেটকে সাপোর্ট দিতে কাত হয়ে শোয়ার পরে পেটের নিচে একটা বালিশ আর দুই হাঁটুর মাঝে আরেকটা বালিশ ব্যবহার করতে পারেন সুবিধা মনে হলে লম্বা কোলবালিশও ব্যবহার করতে পারেন এ ছাড়াও ঘুমানোর জন্য আপনার জন্য আরামদায়ক বালিশ তোষক ও কাঁথাকম্বল ব্যবহার করবেন অস্বস্তিকর বালিশ ব্যবহার করলে ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারেতবে ঘুমের অবস্থান নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না আপনার শরীর হয়তো ঘুমের মধ্যে আপনাআপনি সবচেয়ে ভালো অবস্থানটি বেছে নিতে পারবেনিয়ম করে ঘুমানোর অভ্যাস করুন প্রতিদিন ঘুমানোর জন্য একটি রুটিন বানাতে পারেন এই রুটিন অনুযায়ী একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন এই অভ্যাস ঘুমকে নিয়মিত করতে সাহায্য করবেতবে কোনো কারণে এক রাতে রুটিন অনু্যায়ী ঘুম না হলে অথবা কম ঘুম হলে পরদিন দুপুরে কিংবা অন্য সময়ে বেশি করে ঘুমিয়ে সেটা পূরণের চেষ্টা করবেন না এতে করে আপনার নিয়মিত ঘুমের রুটিনটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে বরং একদিন একটু কম ঘুম হলেও পরের দিন আবার রুটিনমতো একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করুনদিনে ঘুমানো কমিয়ে দিন দিনে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে সেটি বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন কেননা এতে রাতে ঠিকমতো ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারে তবে এমন যদি হয় যে রাতে ঘুমে অনেক সমস্যা হচ্ছে এবং দিনে না ঘুমালে প্রচুর ক্লান্ত লাগছে তাহলে ক্লান্তি কাটানোর জন্য দুপুরের আগে অল্প কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে নিতে পারেনঘুম না আসলে অথবা মাঝরাতে ভেঙে গেলে উঠে হালকা কাজ করুন ২০–৩০ মিনিট শুয়ে থাকার পরেও ঘুম না আসলে বিছানা থেকে উঠে যান কিছুক্ষণের জন্য কোনো ছোটোখাটো কাজ করতে পারেন যেমন ঘর গোছানো অথবা শেলফ এর বই গোছানো এতে একসময় ক্লান্তি আসলে তা ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে তবে ফোন অথবা কম্পিউটার চালাবেন না এতে ঘুমের সমস্যা আরও বাড়তে পারেসময় হিসাব করে ঘুমাবেন না সারাদিনের মোট কতক্ষণ ঘুমাচ্ছেন ঘুম ঠিক পরিমাণে হচ্ছে কি না—এসব নিয়ে বেশি চিন্তা করবেন না এগুলো নিয়ে মাথায় দুশ্চিন্তা থাকলে ঘুম আসতে আরও সমস্যা হতে পারেঘুমানোর আগে উষ্ণ পানিতে গোসল করুন রাতে ঘুমানোর ঘন্টাখানেক আগে উষ্ণ বা কুসুম গরম পানিতে গোসল করে নিতে পারেন এটি আপনাকে রিল্যাক্স করিয়ে ঘুম আসতে সাহায্য করতে পারে তবে খুব গরম অর্থাৎ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার পানিতে গোসল না করাই শ্রেয় ব্যায়ামগর্ভাবস্থায় আপনার পছন্দের ব্যায়াম করা চালিয়ে যান যেমন হাঁটা দৌড়ানো সাইকেল চালানো ও সাঁতার কাটা আগে থেকে ব্যায়াম করার অভ্যাস না থাকলে হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে পারেন নিয়মিত ব্যায়াম করলে (বিশেষ করে হাঁটলে অথবা সাঁতার কাটলে) তা গর্ভাবস্থার রাতে ভালো ঘুমে সাহায্য করে তবে ঘুমানোর ঠিক আগের চার থেকে ছয় ঘন্টার মধ্যে ব্যায়াম না করাই ভালো এর আগে প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করে নিতে পারেন মানসিক চাপ কমানোমেডিটেশন করার চেষ্টা করুন মানসিক প্রশান্তির জন্য যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করতে পারেন এ ধরনের ব্যায়াম স্ট্রেস কমানোর পাশাপাশি ঘুমে সাহায্য করতে পারে দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন দুশ্চিন্তা কমানোর ব্যায়ামমনের কথা কাছের মানুষকে জানান যদি কোনো চিন্তার কারণে ঘুমে সমস্যা হচ্ছে বলে মনে হয় তাহলে সেই চিন্তা দূর করার ব্যবস্থা করুন কাছের মানুষদের আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন সঙ্গী বন্ধু অথবা পরিবারের অন্য কাউকে আপনার সমস্যা জানালে মন হালকা হতে পারে এটি ঘুমের সমস্যা কমাতেও সাহায্য করতে পারেযদি এমন হয় যে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে ইচ্ছা করছে কিন্তু কথা বলার জন্য কাউকে পাচ্ছেন না তাহলে ডায়েরি লেখার চেষ্টা করতে পারেন এ ছাড়া মনের কথা ও মাথায় থাকা চিন্তাগুলো ফোনে ভয়েস রেকর্ড করে অথবা নোট করে রাখতে পারেন অনেক সময় চিন্তা দূর করতে পারলে ঠিকমতো ঘুমানো বেশ সহজ হয়ে আসেঘুমানোর আগে বই পড়তে পারেন ঘুমানোর আগে হালকা কোনো বই পড়তে পারেন এ ছাড়া ছোটোখাটো হাতের সেলাইয়ের কাজ কিংবা পছন্দের ছোটোখাটো যেকোনো কাজ বেছে নিতে পারেন তবে গর্ভাবস্থা সংক্রান্ত বই রহস্য অথবা থ্রিলারের বই এসময়ে এড়িয়ে গেলেই ভালো কারও কারও এসব পড়ে চিন্তা ও উদ্বেগ বেড়ে গিয়ে ঘুমের সমস্যা হতে পারে খাবার ও পানীয়ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পরিহার করুন ঘুমানোর কমপক্ষে ছয় ঘন্টা আগে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুন যেমন চা কফি কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিংকস এগুলো পান করলে ঘুম আসতে দেরি হয় এমনকি ঘুম আসলেও সেটি তেমন গভীর হয় নাগর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় ও খাবার খাওয়া উচিত নয় অতিরিক্ত ক্যাফেইন খেলে সেটি গর্ভের শিশুর ওজন কম হওয়া এবং সময়ের আগে জন্মানোসহ নানান ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারেক্যাফেইন জাতীয় পানীয়ের পরিবর্তে গরম দুধ পান করতে পারেন এতে ট্রিপ্টোফ্যান থাকে ঘুমের কাছাকাছি সময়ে গরম দুধ পান করলে এটি ভালো ও লম্বা সময় ধরে ঘুম হতে সাহায্য করতে পারে তবে আপনার বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকলে ঘুমানোর ঠিক আগেই কিছু খাওয়া থেকে বিরত থাকুনএক বসায় বেশি খাওয়া এড়িয়ে চলুন সারাদিনের খাবার অল্প অল্প করে ভাগ ভাগ করে খাওয়ার চেষ্টা করুন এটি বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা কমাতে সাহায্য করবে এর সাথে সাথে বুক জ্বালাপোড়ার কারণে ঘুমের সমস্যা হলে সেটিও কমাবে ঘুমের আগে আগে খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা বাদ দেওয়া উচিত চেষ্টা করুন ঘুমানোর অন্তত তিন ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে ফেলতে বেশি রাত করে ভারী খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটিও বাদ দিয়ে দিন গর্ভকালীন সময়ে ঘুমের সমস্যা হলে প্রথমে ঘরোয়া চিকিৎসা বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এতে কাজ না হলে কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপি নামের একটি পদ্ধতির মাধ্যমে কাউন্সেলিং করে অনিদ্রার চিকিৎসা করা হতে পারে এর মাধ্যমে সাধারণত ঘুম না আসার কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো প্রতিরোধ করার উপায় নিয়ে কাউন্সেলিং করানো হয় মানসিক রোগ গাইনি অথবা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আপনাকে প্রশিক্ষিত কাউন্সেলরের কাছে রেফার করতে পারেনএসবে কাজ না হলে ডাক্তার আপনাকে নির্দিষ্ট ঘুমের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন উল্লেখ্য গর্ভাবস্থায় ঘুমের ওষুধ খাওয়াকে সাধারণত নিরুৎসাহিত করা হয় গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় প্রচলিত ঘুমের ওষুধ সেবনের ফলে সময়ের আগে সন্তান প্রসব হওয়া জন্মের সময়ে শিশুর ওজন কম হওয়া ও আকারে ছোটো হওয়ার মতো জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে এ ছাড়া গর্ভধারণের শেষের দিকে ও প্রসবকালীন সময়ে উচ্চ ডোজে ঘুমের ওষুধ খেলে নবজাতকের শ্বাসকষ্টসহ নানান মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা হতে পারে তাই কখনোই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে কোনো ঘুমের ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা করবেন না বরং অনিদ্রার সমাধানে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ঘুম না হওয়ার পেছনে শারীরিক অথবা মানসিক কোনো কারণ থাকলে ডাক্তার উপযুক্ত পরামর্শ দিতে পারবেন তিনি প্রয়োজনে আপনার অবস্থা বিবেচনা করে সবচেয়ে নিরাপদ ঔষধটি বেছে নিতে সাহায্য করতে পারবেনগুরুত্বপূর্ণ অনেকসময় ডিপ্রেশন বা তীব্র হতাশার কারণেও ঘুমের সমস্যা হতে পারে পাশাপাশি স্লিপ অ্যাপনিয়া নামক রোগে ঘুমের সময়ে শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসার কারণেও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে এসব কারণে রাতে ঠিকমতো ঘুম না হলে মানসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে নতুবা সময়ের সাথে সমস্যাগুলো মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে গর্ভকালীন সময়ে হবু মায়েরা প্রায়ই ক্লান্তিবোধ করে থাকেন বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস ও শেষের তিন মাসে এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়গর্ভাবস্থায় অবসাদ বা ক্লান্তি একটি কমন উপসর্গ হলেও কারও কারও ক্ষেত্রে লক্ষণটি প্রবলভাবে দেখা দিতে পারে ফলে এটি দৈনন্দিন জীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারেগর্ভকালীন সময়ে হবু মায়েরা প্রায়ই ক্লান্তিবোধ করে থাকেন বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস ও শেষের তিন মাসে এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায় গর্ভাবস্থায় অবসাদ বা ক্লান্তি একটি কমন উপসর্গ হলেও কারও কারও ক্ষেত্রে লক্ষণটি প্রবলভাবে দেখা দিতে পারে ফলে এটি দৈনন্দিন জীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারে গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়৷ এসব পরিবর্তন আপনার কাজ করার শক্তি কমিয়ে ফেলে অবসাদ বা ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারেএসময়ে মূলত আপনার শরীরে বিভিন্ন হরমোন (যেমন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন) এর পরিবর্তনের কারণে আপনি ক্লান্তি অথবা দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন[৩] পাশাপাশি গর্ভধারণের শেষ তিন মাসে শরীরের ওজন অনেকখানি বেড়ে যাওয়ার জন্যও আপনার ক্লান্ত লাগতে পারেএসব ছাড়াও আপনার গর্ভকালীন ক্লান্তির পেছনে অন্যান্য কিছু কারণ থাকতে পারে যেমন— আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা নিদ্রাহীনতা অথবা অপর্যাপ্ত ঘুম রক্তচাপ কমে যাওয়া রক্তে সুগার কমে যাওয়া পিঠ ব্যথা কোমর ব্যথা ও নিতম্বের ব্যথা বদহজম জনিত সমস্যা মর্নিং সিকনেস (বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া) দুশ্চিন্তা অথবা মানসিক চাপ সাধারণত গর্ভকালীন ক্লান্তির জন্য আপনার খারাপ লাগতে পারে কিংবা অসুস্থতা বোধ হতে পারে এতে আপনার গর্ভের সন্তানের কোনো ক্ষতি হবে নাঅনেকে গর্ভাবস্থায় প্রচণ্ড ক্লান্তি বোধ করে থাকেন এমন প্রচণ্ড ক্লান্তি বোধ করাও অস্বাভাবিক নয় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে যেমন আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা ও ডিপ্রেশন এমনটা হলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিশ্চিন্ত হয়ে নেওয়া ভালোএ ছাড়াও আপনি যদি সম্পূর্ণ গর্ভকালজুড়ে অবসাদ বোধ করেন অথবা আপনার ক্লান্তিবোধ ক্রমাগত বেড়ে যেতে থাকে তাহলে একজন চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিনগর্ভকালীন সময়ে ক্লান্তি মূলত আপনার শরীরের যে এখন বিশ্রাম প্রয়োজন তাকেই নির্দেশ করে কাজেই এই সময়টায় যতটা সম্ভব আপনার পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নিন দৈনন্দিন যে কাজগুলো করতে আপনার বেশি কষ্ট হচ্ছে সেগুলোতে তাদের সহায়তা চানরাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া কিংবা কাজের মাঝে মাঝে ১০–১৫ মিনিটের জন্য পা তুলে বিশ্রাম নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন আপনি কর্মজীবী নারী হয়ে থাকলে কাজের ফাঁকে ফাঁকে অন্য একটি চেয়ার অথবা টুলের ওপর দুই পা তুলে বসে বিশ্রাম নিতে পারেন এটি পরবর্তীতে আপনার গর্ভকালীন পায়ে পানি আসা রোধেও সাহায্য করবে কোনোভাবেই আপনার সহ্যক্ষমতা বা ধারণক্ষমতার বেশি পরিশ্রম করতে যাবেন না ঘুমের জন্য একটি নিয়মিত রুটিন অনুসরণ করুননিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুমানোর অভ্যাস সারাদিন আপনাকে সতেজ রাখতে পারেনিয়মিত ঘুমের জন্য প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে উঠুন তাড়াতাড়ি বিছানায় যাওয়ার চেষ্টা করুন দিনে কম ঘুমানোর চেষ্টা করুন এতে রাতে ভালো ঘুম হবে ঘুমানোর পরিবেশ যতটা সম্ভব আরামদায়ক করে তুলুন সাধারণত ৭৯ ঘণ্টার ঘুমকেই আদর্শ বলে ধরা হয় পুষ্টিকর খাবার খানপুষ্টিকর খাবার আপনাকে সারাদিন শক্তি সরবরাহ করবে এবং আপনার দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করবে সাধারণত প্রোটিন ও শর্করার সমন্বয়ে তৈরি খাবার আপনাকে দীর্ঘসময় ধরে শক্তি দিবে আপনি প্রয়োজনীয় পরিমাণ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাচ্ছেন কি না এটা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন এই ব্যাপারে আপনি একটি গর্ভকালীন সুষম খাদ্যতালিকা অনুসরণ করতে পারেনবমি বমি ভাবের জন্য খাবার খেতে সমস্যা হলে একবারে অনেকখানি না খেয়ে দিনে ছয় বারে অল্প অল্প করে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে আপনার রক্তে সুগার লেভেল ঠিক থাকবে যা আপনার ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে ক্যাফেইন ও চিনি খাওয়া কমিয়ে দিনচাকফিতে থাকা ক্যাফেইন ও মিষ্টি জাতীয় খাবারে ব্যবহৃত চিনি আমাদের তাৎক্ষণিক শক্তি দেয় যার জন্য দুর্বল অনুভব করলেই অনেক গর্ভবতী নারী ক্যাফেইন ও চিনিযুক্ত খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়েন এই অভ্যাস এড়িয়ে চলতে হবে কেননা তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি যোগালেও এগুলো পরবর্তীতে আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে যার কারণে আপনার ক্লান্তি আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিকল্প হিসেবে আস্ত ফল খেতে পারেন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনপর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা আপনার ও আপনার গর্ভের সন্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এটি আপনার ক্লান্তি বা অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে গর্ভাবস্থায় দৈনিক গড়ে ২–৩ লিটার বা ৮–১২ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন তবে ঘন ঘন প্রস্রাবের জন্য যদি আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে তাহলে ঘুমানোর ঠিক আগে পানি পান না করাই ভালো ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুনযদিও এই সময়টায় আপনার স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ করতেই আলসেমি লাগতে পারে তবুও নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করুনএকজন গর্ভবতী নারীর সপ্তাহে পাঁচ দিন দৈনিক অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি ধাঁচের ব্যায়াম করা দরকার মাঝারি ধাঁচের ব্যায়াম হিসেবে দ্রুত হাঁটা জগিং অথবা মাতৃত্বকালীন ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করতে পারেননিয়মিত ব্যায়াম আপনার ও আপনার গর্ভের সন্তানের জন্য খুবই উপকারী এটি আপনার অবসাদ দূর করতে মন মেজাজ ভালো রাখতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে এবং রাতে ভালো ঘুম হতে সহায়তা করবেরাতে ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে ব্যায়াম না করাই ভালো এটি বরং আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে যারা আগে থেকেই দৌড়ানোর মতো ভারী ব্যায়াম করে অভ্যস্ত তারা চাইলে সেটি চালিয়ে যেতে পারেন তবে আপনার জন্য কষ্টদায়ক এমন কোনো ভারী ব্যায়াম অথবা দীর্ঘসময় ধরে কোনো ব্যায়াম করবেন না দুশ্চিন্তা কমান ও মন প্রফুল্ল রাখুনঅতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে ক্লান্তি বা অবসাদের সৃষ্টি হয় দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য আপনি মনকে রিলাক্স করে বা আরাম দেয় এমন কিছু কাজ করতে পারেন যেমন অবসর সময়ে গান শোনা গল্প অথবা কবিতার বই পড়া কিংবা শখের কাজ করা এ ছাড়াও বন্ধুবান্ধব অথবা পরিবারের মানুষদের সাথে গল্পগুজব করেও সময় কাটাতে পারেন এতে আপনার দুশ্চিন্তা কমে মন হালকা হতে পারেগর্ভাবস্থায় ক্লান্তি বোধ করা বেশ স্বাভাবিক একটি লক্ষণ তবে এর পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলো থাকলে দ্রুত গাইনী ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন— আগে থেকেই থাইরয়েডের সমস্যা থাকা মাথা ঘুরানো অথবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বুক ধড়ফড় করা চেহারা ফ্যাকাশে দেখানো পেটের উপরিভাগে ব্যথা অস্বাভাবিক পিপাসা অনুভব করা এবং ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া প্রচণ্ড মাথাব্যথা শ্বাসকষ্ট হওয়া পায়ের পাতা অথবা হাত ফুলে যাওয়া চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন চোখে ঝাপসা দেখা আলোর ঝলকানি দেখা একই জিনিস দুইটি করে দেখা অথবা কিছুক্ষণের জন্য কিছুই দেখতে না পারা[১০] ডিপ্রেশনের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পাওয়া প্রথম ত্রৈমাসিকগর্ভধারণের প্রথম তিন মাস অর্থাৎ প্রথম সপ্তাহ থেকে ১৩ সপ্তাহ পর্যন্ত আপনার শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে এই সমস্ত পরিবর্তন থেকে ক্লান্তি লাগতে পারে এসবের মধ্যে রয়েছে হরমোনাল পরিবর্তন প্রোজেস্টেরোন নামক এক প্রকার হরমোন এই সময়টায় হুট করে অনেক বেড়ে যায় আকস্মিক এই হরমোনাল পরিবর্তনে শারীরিক ও মানসিক অবসাদ তৈরি হতে পারে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি গর্ভের শিশুর জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি ও অক্সিজেনের সরবরাহ করতে গিয়ে আপনার শরীর রক্ত সরবরাহের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়—যা আপনাকে ক্লান্ত করে ফেলতে পারে অন্যান্য শারীরিক পরিবর্তন বিপাকক্রিয়া বেড়ে যাওয়া হার্টরেট বা হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি রক্তে সুগার কমে যাওয়া অথবা নিম্ন রক্তচাপ থেকে আপনার ক্লান্ত লাগতে পারেদ্বিতীয় ত্রৈমাসিকপ্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে আপনার শরীর ধীরে ধীরে পরিবর্তনগুলোর সাথে খাপ খাইয়ে নেবে মর্নিং সিকনেসও সাধারণত এই সময়ে কমে আসে সব মিলিয়ে গর্ভধারণের মাঝের তিন মাস আপনি কিছুটা হলেও নিজেকে সক্রিয় অনুভব করবেন অর্থাৎ প্রথম তিন মাসের তুলনায় কম ক্লান্তিতে ভুগবেনকাজেই প্রয়োজনীয় কাজগুলো এর মধ্যেই সেরে ফেলুন কারণ সামনের তিন মাস সম্ভবত আপনি আবারও ক্লান্তি বোধ করতে যাচ্ছেনশেষ ত্রৈমাসিকএবার আপনার ক্লান্তি আরও প্রবলভাবে ফিরে আসতে পারে এর কারণগুলো হতে পারে—গর্ভের শিশু এই সময়ে দ্রুতগতিতে বড় হয় যার জন্য আপনার ওজন ও পেটের আকার লক্ষণীয়ভাবে বেড়ে যায় শরীরের অতিরিক্ত এই ওজন বহন করা আপনার জন্য হতে পারে কষ্টকর ও ক্লান্তিদায়ক গর্ভবতী মায়ের বড় হয়ে যাওয়া পেটকে অনেকসময় বেবি বাম্প বলা হয় এই বাড়ন্ত বেবি বাম্পসহ অন্যান্য লক্ষণ (যেমন বদহজম বুক জ্বালাপোড়া করা কিংবা রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম) এর কারণে গর্ভকালীন নিদ্রাহীনতা দেখা দিতে পারে যা পরবর্তীতে ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে সন্তান জন্মদান ও এর পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক হবু মা এই সময়টায় মানসিক চাপ বোধ করেন অথবা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করেন—যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় একারণেও ক্লান্ত লাগতে পারে প্রধান লক্ষণগুলো হল শ্বাসকষ্ট শ্বাসপ্রশ্বাসের সময় শিস্ দেওয়ার মত শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া (wheezing) বুকে চাপ লাগা – মনে হতে পারে যেন কোন বেল্ট বুকের চারপাশে আঁটসাঁট হয়ে আছে কাশিলক্ষণগুলো ক্ষণস্থায়ীভাবে খারাপ হয়ে যেতে পারে তখন এটাকে বলা হয় অ্যাজমা অ্যাটাক হাঁপানি ছাড়াও অন্যান্য রোগের একই রকম লক্ষণ থাকতে পারে তাই সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে উপযুক্ত চিকিৎসা নেয়াটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যদি মনে হয় আপনার বা আপনার বাচ্চার হাঁপানি রোগ আছে তাহলে আপনি একজন ডাক্তারের সহায়তা নিবেন ডাক্তার সাধারণত লক্ষণগুলো শুনে নিয়ে এবং কিছু সহজ পরীক্ষার মাধ্যমে হাঁপানি রোগ নির্ণয় করতে পারবেনহাঁপানি রোগের চিকিৎসা কীহাঁপানি রোগ সাধারণত ইনহেলার দিয়ে চিকিৎসা করা হয় ইনহেলার একটি ছোট যন্ত্র যা শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে ওষুধ শরীরে প্রবেশ করায়ইনহেলার প্রধানত দুই ধরণের হয় যেমনপ্রশমণকারী (reliever) ইনহেলার – হাঁপানির লক্ষণগুলো দ্রুত সারিয়ে ফেলতে এই ইনহেলার ব্যবহৃত হয় এর কার্যকারিতা স্বল্প সময়ের জন্য স্থায়ী হয় প্রতিরোধক (preventer) ইনহেলার – হাঁপানির লক্ষণগুলো যাতে দেখা না দেয় সেজন্য এই ইনহেলার প্রতিদিন ব্যবহৃত হয়কিছু রোগীর ইনহেলারের পাশাপাশি ওষুধও খেতে হতে পারে ফুসফুসে বাতাস আনা নেওয়া করে যে শ্বাসনালীগুলো সেগুলোর (প্রদাহের কারণে) ফুলে ওঠার কারণে হাঁপানি হয় শ্বাসনালীগুলো অতিরিক্ত সংবেদনশীল হয়ে পরে এবং সাময়িকভাবে সরু হয়ে যায়কিছু কিছু জিনিস হাঁপানি উদ্রেক করতে পারে সচরাচর দেখা যায় এমন কিছু কারণ হল অ্যালার্জি যেমন পশুর লোম ফুলের রেণু ধূলিকণার পোকা ইত্যাদির প্রতি অ্যালার্জি ধোঁয়া বা পরিবেশ দূষণ ঠাণ্ডা হাওয়া শারীরিক ব্যায়ামসর্দিকাশির মতো অসুস্থতা বা ভাইরাস সংক্রমণহাঁপানি উদ্রেকের এই কারণগুলোকে চিহ্নিত করে সেগুলো এড়িয়ে চললে লক্ষণগুলোকে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভবহাঁপানি রোগ কতদিন থাকেহাঁপানি অনেকের জন্যই একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ বিশেষ করে যাদের এই রোগ প্রাপ্তবয়স্ক হবার পরে শুরু হয় বাচ্চাদের ক্ষেত্রে হাঁপানি অনেকসময় ভালো হয়ে যায় বা বয়ঃসন্ধিকালে অবস্থার উন্নতি হয় তবে জীবনের পরবর্তী সময়ে রোগটি আবার ফিরে আসতে পারেউপসর্গুলো সাধারণত চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় বেশিরভাগ মানুষই স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে তবে যারা তুলনামূলকভাবে গুরুতর হাঁপানির রোগী তাদের দৈনন্দিন কাজকর্মে রোগটি ব্যঘাত ঘটাতে পারে যদিও হাঁপানি সাধারণত নিয়ন্ত্রণ এর মধ্যে রাখা যায় তবুও মনে রাখতে হবে এটি একটি জটিল রোগ যা নানা ধরনের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে যেমন সবসময় ক্লান্ত লাগা মানসিক চাপ উদ্বেগ ও বিষন্নতা ফুসফুসের সংক্রমণ (নিউমোনিয়া) বাচ্চাদের বেড়ে ওঠা বা বয়ঃসন্ধিতে দেরি হওয়া কর্মক্ষেত্র বা স্কুলে অনুপস্থিতি বা আগের চেয়ে কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া হঠাৎ করে হাসপাতাল বা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়ায় দৈনন্দিন কাজ ও অবসর ব্যহত হওয়া প্রতি বছর বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষ অ্যাজমা অ্যাটাকের কারণে মৃত্যুবরণ করেন কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এর অনেকগুলো মৃত্যুই ঠেকানো সম্ভব হতপ্রতি বছর বিশ্বব্যাপী অনেক মানুষ অ্যাজমা অ্যাটাকের কারণে মৃত্যুবরণ করেন কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এর অনেকগুলো মৃত্যুই ঠেকানো সম্ভব হতআপনি যদি হাঁপানিরোগের সঠিক চিকিৎসা গ্রহণ করেন তবে অ্যাজমা অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার আশংকা অনেকটাই কমে আসে বছরে কমপক্ষে একবার ডাক্তারের কাছে গিয়ে হাঁপানির পরীক্ষা করিয়ে নিন এবং আপনার চিকিৎসা সম্পর্কে পরামর্শ নিন হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে কি করবেন সে সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা নিয়ে রাখুন সম্ভব হলে লিখিত আকারে পরামর্শ নেবার চেষ্টা করবেন যাতে অ্যাজমা অ্যাটাক হলে সেই লেখা অনুযায়ী আপনি চিকিৎসা নিতে পারেন অ্যাজমা অ্যাটাকের পরিচ্ছেদসমূহ অ্যাজমা অ্যাটাকের লক্ষণগুলো কী কী অ্যাজমা অ্যাটাক হলে করণীয় কী কখন দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে অ্যাজমা অ্যাটাকের পরে কী করণীয় কীভাবে অ্যাজমা অ্যাটাক প্রতিরোধ করা যায় অ্যাজমা রোগীর পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের জন্য পরামর্শ আপনার অ্যাজমার লক্ষণগুলো ক্রমশ খারাপের দিকে যাচ্ছে (কাশি শ্বাসকষ্ট বুকে চাপ চাপ অনুভব বা শ্বাসপ্রশ্বাসে শোঁ শোঁ আওয়াজ হওয়া) ইনহেলার ব্যবহার করেও কাজ হচ্ছে না শ্বাসকষ্ট এতই বেড়ে গেছে যে কথা বলা খাওয়া বা ঘুমানো সম্ভব হচ্ছে না আপনার শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুত হচ্ছে এবং মনে হচ্ছে যে আপনি দম ফেলতে পারছেন না আপনার পিকফ্লো স্কোর স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেছে এটা এক ধরনের পরীক্ষা যাতে মেপে দেখা হয় আপনি ফুসফুস হতে কত দ্রুত বাতাস বের করে দিতে পারেন (আমরা পিক ফ্লো নিয়ে আর্টিকেল তৈরি করছি তার আগ পর্যন্ত এই সম্পর্কে অন্য উৎস থেকে জানার চেষ্টা করুন) শিশুদের ক্ষেত্রে বুকে বা পেটে ব্যথার সমস্যাও দেখা দিতে পারেএই লক্ষণগুলো যে হঠাৎ করেই শুরু হতে হবে এমন না বরং প্রায়ই লক্ষণগুলো ধীরে ধীরে কয়েক ঘন্টা বা কয়েকদিন ধরে খারাপের দিকে যেতে থাকে আপনার যদি মনে হয় আপনার অ্যাজমা আটাক হচ্ছে তবে নিম্নোক্ত বিষয়গুলো খেয়াল করুনসোজা হয়ে বসুন শুয়ে পরবেন না ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া আর ছাড়ার চেষ্টা করুন৷ শান্ত থাকুন ঘাবড়ে গেলে বা প্যানিক করলে অবস্থা আরো খারাপ হতে পারে৷ লক্ষণ খারাপ হলে যেই ইনহেলার নেয়ার কথা সেটাকে সাধারণত রিলিভার ইনহেলার বলা হয় আপনার রিলিভার ইনহেলার থেকে ৩০ থেকে ৬০ সেকেন্ড পরপর ১ বার করে পাফ (দম) নিন সর্বাধিক ১০ বার পর্যন্ত পাফ নিতে পারবেন যদি আপনার সাথে ইনহেলার না থাকে যদি ইনহেলার ব্যবহারের পরেও আপনার অবস্থা খারাপ হতে থাকে ইনহেলারের ১০টি পাফ নেয়ার পরও যদি ভালো বোধ না যে কোন পর্যায়ে আপনি যদি দুশ্চিন্তা বোধ করেনযেকোন জরুরি অবস্থায় সাহায্য চাইতে ভয় পাবেন না যদি সম্ভব হয় হাসপাতালে যাওয়ার সময় আপনার ব্যবহৃত ওষুধগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য নিয়ে যান যদি ১৫ মিনিটের মধ্যে হাসপাতালে যাওয়া সম্ভব না হয় তাহলে ধাপটি (ইনহেলার পাফ নেয়া) পুনরায় অবলম্বন করুনযদি আপনার লক্ষণসমূহের উন্নতি হয় এবং আপনার তাৎক্ষণিক সাহায্যের প্রয়োজন না হয় তবে চেষ্টা করুন অন্ততপক্ষে ঐদিন একবার ডাক্তার দেখিয়ে নিতে যদি হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তবে হাসপাতাল থেকে ছাড়া পাওয়ার ৪৮ ঘন্টার মধ্যে পুনরায় ডাক্তার দেখিয়ে নেয়া উচিত যদি হাসপাতালের চিকিৎসার প্রয়োজন না হয়ে থাকে তবে সেদিনই ডাক্তার দেখিয়ে নেয়ার চেষ্টা করবেন অ্যাজমা অ্যাটাকের জন্য যাদের হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় তাদের অনেকেরই আবার ২ সপ্তাহের মধ্যে একই কারণে হাসপাতালে ভর্তির প্রয়োজন হয় তাই পরবর্তী অ্যাটাক ঠেকাতে আপনার করণীয় সম্পর্কে আলোচনা করা জরুরি৷ আপনার চিকিৎসাপদ্ধতি বা জীবনধারায় কোন ধরনের পরিবর্তনের প্রয়োজন আছে কিনা সে বিষয়ে আপনার ডাক্তারের সাথে আলোচনা করুন যেমন আপনার ওষুধের ডোজ পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে বা সঠিকভাবে ইনহেলার ব্যবহারের পদ্ধতি আবার ঝালাই করে নিতে হতে পারে নিম্নোক্ত উপায়গুলো অবলম্বন করলে আপনার অ্যাজমা অ্যাটাকে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসতে পারে আপনার অ্যাজমার চিকিৎসা নিয়ম মত মেনে চলুন এবং প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ওষুধগুলো সময়মত সেবন করুন বছরে কমপক্ষে একবার আপনার হাঁপানি চিকিৎসা বিষয়ে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিন৷ আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে নিশ্চিত হয়ে নিন যে আপনি ইনহেলার সঠিক কায়দায় ব্যবহার করতে পারছেন যে সমস্ত বিষয় আপনার লক্ষণগুলো বাড়িয়ে দেয় সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুনযদি আপনার লক্ষণসমূহ খারাপ হতে থাকে বা আপনার ঘন ঘন ইনহেলার ব্যবহারের প্রয়োজন হয় তবে এ বিষয়ে সতর্ক হোন আপনার নির্ধারিত চিকিৎসা পদ্ধতি সঠিকভাবে মেনে চলুন এবং লক্ষণগুলো খারাপ হতে থাকলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হন৷ অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলো আমাদের দেহের অ্যাপেন্ডিক্স নামক একটি অংশের রোগ অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলো আমাদের দেহের অ্যাপেন্ডিক্স নামক একটি অংশের রোগ অ্যাপেন্ডিক্স একটি ছোটো সরু থলের মত অংশ আকারে দুই থেকে চার ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে এটি সাধারণত তলপেটের ডানদিকে থাকে আমাদের নাড়িভুঁড়ির যে অংশে পায়খানা তৈরি হয় তার সাথে এটি সংযুক্ত থাকেকখনো কখনো এই থলেতে জ্বালাপোড়া/প্রদাহ হয়ে তা ফুলে ওঠে এবং ব্যথা হয় তখন সেই অবস্থাকে অ্যাপেন্ডিসাইটিস বলা হয়৷আমাদের শরীরে অ্যাপেন্ডিক্স এর সুনির্দিষ্ট ভূমিকা সম্পর্কে এখনো জানা যায়নি তবে কোনো অসুস্থতার জন্য অপারেশনের মাধ্যমে অ্যাপেন্ডিক্স ফেলে দেওয়া ক্ষতিকর নয় অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে শুরুতে সাধারণত পেট ব্যথা হয় পেটের মাঝখানের দিকে (নাভির আশেপাশে) এই ব্যথা শুরু হয়ে থাকেপ্রথমে ব্যথাটি আসাযাওয়া করতে থাকে কয়েক ঘণ্টার মধ্যে এই ব্যথা তলপেটের ডানদিকে গিয়ে স্থির হয় যেখানে সাধারণত অ্যাপেন্ডিক্স অবস্থিত থাকে তখন অনবরত তীব্র ব্যথা দেখা দেয় এই পর্যায়ে ব্যথা আর আগের মতো আসাযাওয়া করে নাযেখানে ব্যথা হচ্ছে সেখানে চাপ দিলে অথবা কাশি দিলে কিংবা হাঁটাচলা করলে ব্যথা আরও বেড়ে যেতে পারে খাবারে অরুচি বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা ডায়রিয়া অ্যাপেন্ডিসাইটিস একটি কমন রোগ যেকোনো বয়সেই মানুষ অ্যাপেন্ডিসাইটিসে আক্রান্ত হতে পারে তবে সাধারণত ১০ থেকে ২০ বছর বয়সীদের এই রোগে আক্রান্ত হতে দেখা যায় ঠিক কী কারণে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হয়ে থাকে তা পরিষ্কার নয় তবে অনেক সময় অ্যাপেন্ডিক্সের মুখে কোনো কিছু আটকে গেলে সেখান থেকে এই সমস্যার সূত্রপাত হতে পারেঅ্যাপেন্ডিক্স থলেটি নাড়িভুঁড়ির সাথে যুক্ত একটি অংশ থলেটি যেখানে সংযুক্ত থাকে সেই পথে কোনোকিছু জমে থলের মুখটি আটকে যেতে পারে যেমন—নাড়িভুঁড়িতে তৈরি হওয়া পায়খানার ছোটো একটি দলা জমে থলের মুখটি আটকে যেতে পারে নাড়িভুঁড়ির দেয়ালে সাধারণত কিছু গ্রন্থি থাকে যেগুলো রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে কোনো ইনফেকশন (যেমন শ্বাসনালীর ইনফেকশন) এর কারণে এসব গ্রন্থি ফুলে উঠতে পারে এ কারণেও অ্যাপেন্ডিক্সের মুখ বন্ধ হয়ে যেতে পারে অ্যাপেন্ডিক্সের মুখ আটকে গেলে এতে প্রদাহ হতে পারে এবং ফুলে যেতে পারে ফলে অ্যাপেন্ডিক্সের ভেতরে চাপ বাড়তে পারে এবং এক পর্যায়ে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যেতে পারেযেহেতু এখনো অ্যাপেন্ডিসাইটিস এর পেছনের সুনির্দিষ্ট কারণ জানা যায়নি তাই ঠিক কী উপায়ে এই রোগ প্রতিরোধ করা যায় তা নিশ্চিতভাবে এখনো বলা সম্ভব নয় পেটের ব্যথা যদি ধীরে ধীরে বাড়তে থাকে তবে দেরি না করে ডাক্তার দেখানো উচিত নিচের দুটি ক্ষেত্রে জরুরি ভিত্তিতে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে— পেটের ব্যথা যদি হঠাৎ করেই অনেক বেড়ে গিয়ে পুরো পেটে ছড়িয়ে পড়ে পেটের ব্যথা কিছুক্ষণের জন্য কমে গিয়ে এরপর আবার বেড়ে যায়ব্যথা যদি কিছুক্ষণের জন্য কমে গিয়ে এরপর আবার বেড়ে যায় তাহলে সেটি অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারে অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেলে বিভিন্ন মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে এমনকি রোগীর মৃত্যু হতে পারে তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হলে সাধারণত অপারেশনের মাধ্যমে দ্রুত রোগীর অ্যাপেন্ডিক্স কেটে ফেলে দেওয়া প্রয়োজন অ্যাপেন্ডিক্স কেটে বা সরিয়ে ফেলার অপারেশনের নাম অ্যাপেন্ডিসেকটোমি বা অ্যাপেন্ডেকটোমি এটি বেশ কমন একটি অপারেশন এই অপারেশনটি দুটি পদ্ধতিতে করা যায়— ওপেন সার্জারি সাধারণত অ্যাপেন্ডিক্স ফেটে গেলে বা অন্য কোনো জটিলতা থাকলে সরাসরি পেট কেটে অপারেশন করার প্রয়োজন হয় এই পদ্ধতিকে বলা হয় ওপেন সার্জারি ল্যাপারোস্কোপি এই পদ্ধতিতে সরাসরি পেট কাটার পরিবর্তে পেটে তিনচারটি ছোটো ফুটো করা হয় এসব ছিদ্র দিয়ে প্রয়োজনীয় যন্ত্র ঢুকিয়ে অপারেশন করা হয়অপারেশনের পর পুরোপুরি সুস্থ হতে সাধারণত কয়েক সপ্তাহ সময় লাগে তবে ওপেন সার্জারির পরে কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ ভারী কাজ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে ইউরিন ইনফেকশন খুবই পরিচিত একটি রোগ এই রোগে প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া অথবা ঘনঘন প্রস্রাব হওয়াসহ নানান রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে কিছু নিয়মকানুন মেনে চললে এবং সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে সহজেই পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব আমাদের শরীর থেকে বর্জ্য ও অতিরিক্ত পানি প্রস্রাব হিসেবে বেরিয়ে যায় প্রস্রাব বেরিয়ে যাওয়ার এই ব্যবস্থার সাথে সম্পর্কিত অঙ্গগুলো নিয়ে আমাদের মূত্রতন্ত্র গঠিত মূত্রতন্ত্রের মধ্যে থাকে দুটি কিডনি দুটি ইউরেটার একটি মূত্রথলি বা ব্লাডার ও একটি মূত্রনালীমূত্রতন্ত্রের কোনো অংশে জীবাণুর সংক্ৰমণ হলে সেটিকে ইউরিন ইনফেকশন বা প্রস্রাবের সংক্ৰমণ বলে ডাক্তারি ভাষায় একে ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন বা ইউটিআই বলা হয় ইউরিন ইনফেকশনের সবচেয়ে কমন লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা অথবা জ্বালাপোড়া হওয়া স্বাভাবিকের চেয়ে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া রাতে বারবার প্রস্রাবের বেগ আসা অস্বাভাবিক গন্ধযুক্ত অথবা ঘোলাটে প্রস্রাব হওয়া হঠাৎ প্রস্রাবের বেগ আসা অথবা বেগ ধরে রাখতে সমস্যা হওয়া তলপেটে ব্যথা হও প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া কোমরের পেছনে পাঁজরের ঠিক নিচের অংশে ব্যথা হওয়া জ্বর আসা কিংবা গা গরম লাগা এবং শরীরে কাঁপুনি হওয়া শরীরের তাপমাত্রা ৩৬° সেলসিয়াস বা ৯৬৮° ফারেনহাইট এর চেয়ে কমে যাওয়া ক্লান্তি ও বমি বমি লাগাওপরের লক্ষণগুলোর পাশাপাশি বয়সভেদে প্রস্রাবের ইনফেকশনের লক্ষণগুলোতে কিছুটা ভিন্নতা দেখা দিতে পারেবয়স্ক ও প্রস্রাবের নল (ক্যাথেটার) দেওয়া ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে লক্ষণীয় পরিবর্তনগুলো হলো— অস্বাভাবিক আচরণ মানসিক বিভ্রান্তি অথবা ক্ষোভ নতুন করে শরীরে কাঁপুনি অথবা ঝাঁকুনি হওয়া প্রস্রাব করে জামাকাপড় নষ্ট করে ফেলাআবার বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সাধারণ লক্ষণগুলোর পাশাপাশি ভিন্ন ধরনের কিছু লক্ষণ দেখা দেয় যেমন— মেজাজ খিটখিটে হয়ে যাওয়া ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করা বন্ধ করে দেওয়া জ্বর আসা বা শরীরের তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়া ঘন ঘন প্রস্রাব করা কিংবা হঠাৎ বিছানায় প্ৰস্রাব করতে শুরু করা বমি হওয়াপ্রস্রাবে সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেওপরের লক্ষণগুলোর পাশাপাশি নিচের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে— শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যাওয়া কিংবা জ্বর জ্বর লাগার সাথে শরীরে কাঁপুনি হওয়া মানসিক বিভ্রান্তি অথবা ঝিমুনি হওয়া কিংবা কথা জড়িয়ে আসা সারাদিন ধরে প্রস্রাব বন্ধ থাকা তলপেটে অথবা কোমরের পেছনে পাঁজরের ঠিক নিচের অংশে ব্যথা হওয়া প্রস্রাবে রক্ত যাওয়া এগুলো কিডনির ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে দ্রুত চিকিৎসা শুরু না করলে এটি মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে সাধারণত পায়খানায় থাকা বিভিন্ন জীবাণু মূত্রতন্ত্রে প্রবেশ করে ইউরিন ইনফেকশন ঘটায় প্রস্রাবের রাস্তা বা মূত্রনালী দিয়ে এসব জীবাণু মূত্রতন্ত্রে প্রবেশ করেনারীপুরুষভেদে সবারই প্রস্রাবের ইনফেকশন হতে পারে তবে নারীদের মধ্যে এই রোগের সংক্ৰমণ হওয়ার প্রবণতা বেশি এর কারণ হলো নারীদের মূত্রনালী পুরুষদের মূত্রনালীর তুলনায় দৈর্ঘ্যে অনেক ছোটোএ ছাড়া নারীদের মূত্রনালী পায়ুপথের খুব কাছাকাছি অবস্থিত ফলে ব্যাকটেরিয়া পায়ুপথ থেকে মূত্রনালীতে প্রবেশ করে প্রস্রাবের সংক্ৰমণ ঘটানোর সম্ভাবনা বেড়ে যায়যেসব কারণে ইউরিন ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়— পর্যাপ্ত পানি পান না করলে মূত্রতন্ত্রের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে এমন রোগ হলে যেমন কিডনিতে পাথর হওয়া যৌনাঙ্গ পরিষ্কার ও শুকনো না রাখলে যেকোনো কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে যেমন— টাইপ ২ ডায়াবেটিস অথবা এইচআইভি আক্রান্ত হলে কেমোথেরাপি অথবা দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ সেবনকালে গর্ভবতী হলে মূত্রথলি পুরোপুরি খালি করতে বাধা সৃষ্টি করে এমন রোগ হলে যেমন পুরুষদের প্রস্টেট গ্রন্থি বড় হয়ে যাওয়া শিশুদের কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা স্নায়ুতন্ত্রের কোনো অসুখ মাসিক চিরতরে বন্ধ হয়ে গেলে এই ঘটনাকে মেনোপজ বলা হয় এক্ষেত্রে ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন কমে যাওয়ায় সংক্ৰমণ প্রবণতা বেড়ে যায় যৌন সহবাস করলে প্রস্রাবের রাস্তায় নল বা ক্যাথেটার পরানো থাকলে ইতঃপূর্বে প্রস্রাবের ইনফেকশন হয়ে থাকলে উল্লেখ্য ইউরিন ইনফেকশন ছোঁয়াচে নয় এটি যৌন সহবাসের মাধ্যমে ছড়ায় না কিন্তু সহবাসের সময়ে ঘর্ষণের কারণে জীবাণু মূত্রনালীতে প্রবেশ করতে পারে কিংবা ইতোমধ্যে মূত্রনালীতে থাকা জীবাণু আরও ভেতরে চলে যেতে পারে ইউরিন ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দিলে সেগুলো উপেক্ষা না করে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন ডাক্তার প্রস্রাব পরীক্ষা করানোর পাশাপাশি প্রয়োজনবোধে উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনঅ্যান্টিবায়োটিকের সম্পূর্ণ কোর্স শেষ করা গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণগুলো কমে আসতে শুরু করলেও প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী ঔষধের কোর্স সম্পন্ন করতে হবেসাধারণত ঔষধ খাওয়া শুরু করার দুইতিন দিনের মধ্যে লক্ষণগুলো কমতে শুরু করে যদি ঔষধের কোর্স সম্পন্ন করার পরেও লক্ষণের উন্নতি না হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরিবিশেষ দ্রষ্টব্য গর্ভাবস্থায় চিকিৎসা নেওয়ার ক্ষেত্রে যথেষ্ট সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে এবং ডাক্তারের সকল পরামর্শ মেনে চলতে হবেকতদিন ঔষধ সেবন করতে হয়সাধারণ ইউরিন ইনফেকশন হলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে তিন দিন থেকে এক সপ্তাহ অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয় তবে ইনফেকশনের কারণ ও ধরনের ওপর ভিত্তি করে আরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজন হতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে কয়েক মাস ধরে অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করতে হতে পারেগুরুতর ইউরিন ইনফেকশন হলে রোগীকে পরীক্ষানিরীক্ষা ও চিকিৎসার জন্য হাসপাতালে পাঠানো হয় এক্ষেত্রে কিছুদিন হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারেইউরিন ইনফেকশন উপেক্ষা করলে সেটি খুব সহজেই গুরুতর রূপ ধারণ করতে পারে তাই লক্ষণগুলোর ব্যাপারে সচেতন থাকা উচিতইউরিন ইনফেকশনের ঘরোয়া চিকিৎসাইউরিন ইনফেকশন তেমন গুরুতর না হলে রোগী কয়েকদিনের মধ্যেই সুস্থ হয়ে ওঠে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চলার পাশাপাশি ঘরোয়াভাবে নিচের উপদেশগুলো মেনে চলতে পারেন—ব্যথা ও জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল খাওয়া যায় প্রস্রাবের ইনফেকশনের ব্যথা কমাতে অন্যান্য ঔষধের তুলনায় প্যারাসিটামল অধিক কার্যকর শিশুদের প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়ানো যেতে পারে শিশুকে প্যারাসিটামল খাওয়ানোর নিয়ম জানতে শিশুদের জন্য প্যারাসিটামল আর্টিকেলটি পড়ুন পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে এবং প্রচুর পানি পান করতে হবে এমন পরিমাণে পানি পান করা উচিত যেন নিয়মিত স্বচ্ছ ও হালকা হলুদ রঙের প্রস্রাব হয় নিয়মিত প্রস্রাব করলে সেটি শরীর থেকে ব্যাকটেরিয়া বের করে দিতে সাহায্য করে পেটে পিঠে ও দুই উরুর মাঝে গরম সেঁক নেওয়া যায় এটি অস্বস্তি উপশমে সাহায্য করতে পারে সুস্থ না হওয়া পর্যন্ত যৌন সহবাস থেকে বিরত থাকা ভালো ইউরিন ইনফেকশন ছোঁয়াচে না হলেও ইনফেকশন থাকা অবস্থায় যৌন সহবাস অস্বস্তিকর হতে পারেকিডনি রোগ হৃদরোগ অথবা প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারার মতো বিশেষ বিশেষ ক্ষেত্রে দৈনিক কতটুকু পানি পান করা নিরাপদ সেটি ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিতে হবেবারবার ইউরিন ইনফেকশন হওয়াচিকিৎসা নেওয়ার পরে আবারও ইউরিন ইনফেকশন হলে বিভিন্ন ধরনের পরীক্ষানিরীক্ষা করানোর প্রয়োজন হয় এক্ষেত্রে বিশেষ অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দেওয়া হতে পারেমেনোপজের কারণে প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া হলে মাসিকের রাস্তায় ইস্ট্রোজেন ক্রিম ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে ইউরিনের ইনফেকশনের চিকিৎসা না করা হলে বিভিন্ন জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যেমন ইনফেকশন কিডনিতে পৌঁছে গেলে কিডনির স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে ইনফেকশন রক্তে ছড়িয়ে পড়লে সেপসিস নামক মারাত্মক জটিলতা দেখা দিতে পারে রোগীর জীবন বিপন্ন হতে পারে পুরুষদের ক্ষেত্রে বারবার সংক্ৰমণ হলে মূত্রনালি সরু হয়ে যেতে পারে এতে মূত্রতন্ত্রের জটিলতার পাশাপাশি যৌন ও প্রজনন সংক্রান্ত সমস্যা হতে পারে গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে কিডনির ইনফেকশনসহ নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে যেমন জন্মের সময়ে শিশুর ওজন কম হওয়া ও নির্ধারিত সময়ের অনেক আগেই বাচ্চা প্রসব (প্রিম্যাচুর বেবি) হয়ে যাওয়া প্রস্রাবের ইনফেকশন সবসময় প্রতিরোধ করা সম্ভব না হলেও কিছু নিয়ম মেনে চললে ইনফেকশন হওয়ার প্রবণতা কমিয়ে আনা যায়যা করবেন টয়লেটে টিস্যু ব্যবহারের সময়ে সামনে থেকে পেছনে পরিষ্কার করুন যৌনাঙ্গ শুকনো ও পরিষ্কার রাখুন প্রচুর পানি পান করুন দৈনিক কমপক্ষে ছয় থেকে আট গ্লাস পানি পান করা উচিত বাথটাব বা পুকুরে গোসল করার পরিবর্তে শাওয়ার কিংবা বালতির সাহায্যে গোসল করুন প্রস্রাব করার সময়ে মূত্রথলি সম্পূর্ণ খালি করার চেষ্টা করুন সহবাসের আগে ও পরে যৌনাঙ্গ পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন সহবাসের পরে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব প্রস্রাব করুন সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা অন্তর্বাস ব্যবহার করুন এক থেকে তিন বছর বয়সী বাচ্চার ডায়পার বা কাপড়ের ন্যাপি নিয়মিত পরিবর্তন করুন উচ্চ রক্তচাপ বা হাই ব্লাড প্রেসার বা হাইপারটেনশন একটি অতি পরিচিত রোগ সময়মত রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা না করা হলে উচ্চ রক্তচাপ হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মত মারাত্মক স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে অনেক প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি উচ্চ রক্তচাপে ভুগলেও তারা সেই সম্পর্কে অবগত থাকেন না গবেষণায় দেখা গিয়েছে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত প্রায় অর্ধেক রোগীই জানেন না যে তারা এ রোগে ভুগছেন উচ্চ রক্তচাপ থাকা সত্ত্বেও একজন ব্যক্তি প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিয়ে ঝুঁকিমুক্ত স্বাভাবিক জীবনযাপন করতে পারে এ ছাড়াও সুস্থ ব্যক্তির ক্ষেত্রে জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে সহজেই উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমানো যায় সাধারণত হাই প্রেসার এর বিশেষ কোনো লক্ষণ থাকে না রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে কি না তা বোঝার উপায় হলো নিয়মিত রক্তচাপ মাপা রক্তচাপ মাপার ক্ষেত্রে রক্ত মাপার যন্ত্র দ্বারা দুইটি সংখ্যা রেকর্ড করা হয়— সিস্টোলিক প্রেসার বা চাপ দুটি রিডিং এর মধ্যে বড় সংখ্যা বা ওপরের মানটি হলো সিস্টোলিক চাপ হৃৎপিণ্ড থেকে প্রতি স্পন্দনে সারা শরীরে রক্ত সঞ্চালনের সময়ে এই চাপ সৃষ্টি হয় ডায়াস্টোলিক প্রেসার বা চাপ রিডিং দুটির মধ্যে ছোট সংখ্যা বা নিচের মানটি হলো ডায়াস্টোলিক চাপ রক্ত সঞ্চালনের বিরুদ্ধে রক্তনালীর বাধা থেকে এই চাপের সৃষ্টিরক্তচাপকে মিলিমিটার (পারদ) বা mmHg এককে মাপা হয় ধরে নেওয়া যাক আপনার রক্তচাপ ১২০/৮০ মিলিমিটার (পারদ) তাহলে সিস্টোলিক চাপ হবে ১২০ এবং ডায়াস্টোলিক চাপ হবে ৮০মানুষের রক্তচাপ একে অপরের থেকে কিছুটা ভিন্ন হয়ে থাকে একজনের জন্য যেই রক্তচাপ বেশি বা কম তা অন্যজনের ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হতে পারে রক্তচাপ যদি ৯০/৬০ থেকে ১২০/৮০—এই সীমার মধ্যে থাকে তাহলে তা স্বাভাবিক রক্তচাপ হিসেবে বিবেচনা করা হয়সাধারণত উচ্চ রক্তচাপ বলা হয় যদি—রক্তচাপ সবসময় ১৪০/৯০ বা এর বেশি থাকে ৮০ বছর বা তার অধিক বয়সীদের ক্ষেত্রে রক্তচাপ যদি ১৫০/৯০ বা এর বেশি থাকে উচ্চ রক্তচাপের নির্দিষ্ট কারণটি সবসময় চিহ্নিত করা যায় না তবে বিভিন্ন কারণে এই সমস্যার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে উচ্চ রক্তচাপের ঝুঁকিগুলোর মধ্যে রয়েছে— ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়া অতিরিক্ত লবণ খাওয়া খাবারের তালিকায় যথেষ্ট পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল না থাকা অতিরিক্ত পরিমাণে মদপান করা অতিরিক্ত চাকফি কোমল পানীয় ও অন্যান্য ক্যাফেইনজাতীয় পানীয় খাওয়ার অভ্যাস থাকা পর্যাপ্ত শারীরিক পরিশ্রম না করা ধূমপান করা রাতে একটানা ৬৮ ঘণ্টার চেয়ে কম ঘুমানো বয়স পঁয়ষট্টি বছরের ঊর্ধ্বে হওয়া পরিবারে বাবা মা ভাইবোনের মত নিকট আত্মীয়দের হাই ব্লাড প্রেশার থাকা রক্তচাপ ১২০/৮০ থেকে ১৪০/৯০ এর মাঝে থাকলে ভবিষ্যতে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় তাই রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা না হলে এই ঝুঁকি রয়ে যায় এমনকি তা দিন দিন বাড়তে থাকেরক্তচাপ স্বাভাবিকের তুলনায় অত্যধিক বেড়ে গেলে তা রোগীর রক্তনালী হৃৎপিণ্ড মস্তিষ্ক কিডনি ও চোখের মত অঙ্গে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি করে রক্তচাপ একটানা অনিয়ন্ত্রিত থাকলে মারাত্মক ও প্রাণঘাতী কিছু রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় যেমন— হৃদরোগ হার্ট অ্যাটাক স্ট্রোক হার্ট ফেইলিউর (Heart Failure) কিডনির সমস্যা পায়ে রক্ত চলাচল কমে যাওয়া (Peripheral Artery Disease) ফলস্বরূপ গ্যাংগ্রিন বা পচা ঘা হতে পারে অ্যাওর্টা নামক দেহের বৃহত্তম ধমনীর রোগ (Aortic Aneurysms) মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহ কমে যাওয়ার কারণে সৃষ্ট ডিমেনশিয়া (Vascular Dementia) রক্তচাপ যৎসামান্য কমানোর মাধ্যমেও এসব ঝুঁকি কমিয়ে আনা সম্ভব নিয়মিত উচ্চ রক্তচাপ দেখা দিলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য সময়মতো যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন তা না হলে এই ঝুঁকি রয়ে যায় এমনকি তা দিন দিন বাড়তে থাকেরক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডাক্তাররা দুটি পথ অবলম্বনের পরামর্শ দেন প্রথমে জীবনধারায় স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনার উপদেশ দেওয়া হয় এভাবে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে না আসলে সুস্থ জীবনধারা মেনে চলার পাশাপাশি ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয় তবে রোগ নির্ণয়ের সময়ে যদি প্রেসার অনেক বেশি থাকে তাহলে শুরুতেই জীবনধারা পরিবর্তনের পাশাপাশি ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয়জীবনধারায় স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনলে তা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কমায় এছাড়া ইতোমধ্যে উচ্চ রক্তচাপ হয়ে থাকলে সেটিও নিয়ন্ত্রণেও সহায়তা করেবিভিন্ন রোগীর রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে ভিন্ন ভিন্ন পদ্ধতি কার্যকর হতে পারে আপনার জন্য কোন পদ্ধতিটি সবচেয়ে উপযুক্ত তা জানতে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ নিন জীবনধারার কিছু স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধ করতে এবং বেড়ে যাওয়া রক্তচাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করে এমন কিছু পরিবর্তন হলো— খাবারে লবণের পরিমাণ কমানো স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস তৈরি করা মদপান কমিয়ে ফেলা অতিরিক্ত ওজন কমানো নিয়মিত ব্যায়াম করা অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকা ধূমপান ছেড়ে দেওয়াউচ্চ রক্তচাপ সনাক্ত হলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ডাক্তার রোগীকে এক বা একাধিক ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন সঠিক ঔষধ বেছে নিতে রোগীর রক্তচাপ বয়স বর্ণ ও অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকির বিষয়গুলো বিবেচনা করা হয়ঔষধগুলো সাধারণত ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায় এবং দিনে একবার সেবন করতে পরামর্শ দেওয়া হয় তবে প্রয়োজনবোধে দিনে দুইবার করে সেবনের পরামর্শও দেওয়া হতে পারেরক্তচাপ অত্যধিক বেড়ে গেলে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে অনেক রোগীকে একাধিক ঔষধ সমন্বয় করে সেবন করতে হতে পারেযে কাজটি কখনই করবেন না শারীরিকভাবে সুস্থ বোধ করলে অনেকে ঔষধ খাওয়া ছেড়ে দেন বা নিজে নিজে ডোজ কমিয়ে ফেলেন এই কাজটি একেবারেই অনুচিত এর ফলে প্রেসার বেড়ে গিয়ে স্ট্রোক কিডনির রোগ অন্ধত্বসহ বিভিন্ন জটিল ও জীবনঘাতী স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারেতাই নিয়মিত সঠিক ডোজে ঔষধ সেবন করা উচিত ঔষধ সেবনের পাশাপাশি জীবনধারায় সুষম ও পরিমিত খাবার ব্যায়ামের অভ্যাস ধূমপান ত্যাগ—এসব স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনলে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেকটাই সহজ হয়ে আসবে হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ হলে সাধারণত বিশেষ কোনো লক্ষণ দেখা যায় না তাই কেউ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে কি না সেটি জানার কার্যকর উপায় হলো নিয়মিত রক্তচাপ মেপে দেখা হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ হলে সাধারণত বিশেষ কোনো লক্ষণ দেখা যায় না তাই কেউ উচ্চ রক্তচাপে ভুগছে কি না সেটি জানার কার্যকর উপায় হলো নিয়মিত রক্তচাপ মেপে দেখা বাড়িতে প্রেসার মাপার মেশিন থাকলে ঘরে বসেই রক্তচাপ মেপে দেখা যায় তাছাড়া বেশিরভাগ ফার্মেসিতে রক্তচাপ মাপার ব্যবস্থা থাকে হাসপাতাল ও ডাক্তারের চেম্বারেও রক্তচাপ মাপা হয় গর্ভবতী নারীদের ক্ষেত্রে প্রতিটি গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে রক্তচাপ মেপে দেখা হয় রক্তচাপকে মিলিমিটার (পারদ) বা mmHg এককে মাপা হয় সাধারণত রক্তচাপ ১৪০/৯০ অথবা তার বেশি হলে হাই ব্লাড প্রেসার বা উচ্চ রক্তচাপ আছে বলা হয় উচ্চ রক্তচাপকে তিনটি শ্রেণিতে ভাগ করা হয়— ১৪০/৯০ থেকে ১৪৯/৯৯ মৃদু ১৫০/১০০ থেকে ১৫৯/১০৯ মাঝারি ১৬০/১১০ ও তদূর্ধ্ব তীব্র তীব্র উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সাধারণত হাসপাতালে ভর্তি করে রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আনা হয় বাকি দুই ক্ষেত্রে বাসায় ঔষধ দিয়ে চিকিৎসা করা হয় সবগুলো ক্ষেত্রেই ঔষধ দিয়ে রক্তচাপ ১৩৫/৮৫ বা তার নিচে আনার চেষ্টা করা হয় গর্ভধারণের আগে থেকেই যারা উচ্চ রক্তচাপে ভুগছেন বিশেষ করে যারা রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে নিয়মিত ঔষধ সেবন করছেন তারা গর্ভধারণের চেষ্টা করার আগেই ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন কারণ উচ্চ রক্তচাপ চিকিৎসায় ব্যবহৃত কিছু ঔষধ গর্ভাবস্থায় সেবন করলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে ডাক্তারকে জানালে তিনি এসব ঔষধ পরিবর্তন করে দিতে পারবেন ইতোমধ্যে গর্ভধারণ করে ফেললে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেএসব ক্ষেত্রে হাই ব্লাড প্রেসার চিকিৎসায় অভিজ্ঞ একজন গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারলে ভালো ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালসহ দেশের বিভিন্ন বড় বড় হাসপাতালে গাইনি ও প্রসূতিবিদ্যা বিভাগ সংশ্লিষ্ট ফিটোম্যাটারনাল মেডিসিন ইউনিটে এমন বিশেষজ্ঞদের পরামর্শ পাওয়া যায় গর্ভাবস্থায় কোনো গর্ভকালীন চেকআপ যেন বাদ না যায় সেটি নিশ্চিত করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ প্রতি চেকআপে ডাক্তার অথবা প্রশিক্ষিত স্বাস্থ্যকর্মী নিবিড়ভাবে আপনার রক্তচাপ পর্যবেক্ষণ করবেন এর উদ্দেশ্য দুটি— উচ্চ রক্তচাপের জন্য গর্ভের সন্তানের বৃদ্ধি যেন বাধাগ্রস্ত না হয় গর্ভবতী নারীর যেন প্রিএক্লাম্পসিয়া না হয়ে যায় চেকআপের সময়ে ব্লাড প্রেসার মাপা হয় পাশাপাশি প্রস্রাব পরীক্ষা করে প্রোটিন বেরিয়ে যাচ্ছে কি না সেটি দেখা হয় এ ছাড়া প্রিএক্লাম্পসিয়ার সম্ভাবনা আছে কি না তা দেখতে কোনো কোনো রোগীকে প্লাসেন্টাল গ্রোথ ফ্যাক্টর নামক বিশেষ পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হতে পারেগর্ভাবস্থার সময়কালের প্রথম দিকে গর্ভবতী নারীর ব্লাড প্রেসার কমে যাওয়ার প্রবণতা থাকে এই সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কিছুদিনের জন্য ঔষধ সেবন বন্ধ রাখা যেতে পারে প্রতিদিন কিছু সময় ধরে শরীরচর্চা করে শরীরকে সচল রাখলে সেটি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে এজন্য জিমে গিয়ে ভারী ব্যায়াম করার প্রয়োজন নেই দিনে আধা ঘণ্টা করে হাঁটা ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করা কিংবা সুযোগ থাকলে সাঁতার কাটার মতো কিছু বেছে নিতে পারেনসুষম খাবার খাওয়া ও খাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে উচ্চ রক্তচাপ কমিয়ে আনা সম্ভব গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা অনেকে ধারণা করেন যে ম্যাগনেসিয়াম ফলিক এসিড অথবা মাছের তেলের মতো সাপ্লিমেন্ট উচ্চ রক্তচাপ প্রতিরোধে কার্যকর তবে এরকম তথ্যের পক্ষে যথেষ্ট প্রমাণ পাওয়া যায়নি গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ থাকলে সপ্তাহে ১২ বার রক্তচাপ মাপার চেষ্টা করুন তারিখ আর সময় উল্লেখ করে একটা কাগজে ব্লাড প্রেসারগুলো লিখে রাখতে পারেন যাতে পরবর্তী চেকআপের সময় তা দেখাতে পারেন তাহলে ব্লাড প্রেসারের ঔষধে কোনো পরিবর্তন আনতে হবে কি না তা বুঝতে সহজ হবে গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপের কারণে গর্ভবতী মা ও শিশুর স্বাস্থ্য নানান রকম ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে তাই নিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপে যাওয়া এবং রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে করনীয় বিষয়গুলো মেনে চলা খুব গুরুত্বপূর্ণঃ মায়ের স্বাস্থ্যঝুঁকি প্রিএক্লাম্পসিয়া এক্লাম্পসিয়া বা খিঁচুনি ব্রেইন স্ট্রোক জরায়ু থেকে গর্ভফুল আলাদা হয়ে যাওয়া ঔষধের সাহায্যে কৃত্রিমভাবে প্রসব বেদনা শুরু করার প্রয়োজন হওয়া গর্ভের ভেতরে বেড়ে ওঠার জন্য যথেষ্ট অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদানের অভাব হওয়া গর্ভকাল (৩৭তম সপ্তাহ) পূর্ণ হওয়ার আগেই শিশুর জন্ম হওয়া জন্মের সময়ে ওজন স্বাভাবিক (২৫ কেজি) এর চেয়ে কম হওয়া প্রিএক্লাম্পসিয়াপ্রিএক্লাম্পসিয়া হলো গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ জনিত একটি জটিলতা সাধারণত গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পর থেকে কিছু গর্ভবতী নারীকে এই জটিলতায় আক্রান্ত হতে দেখা যায় কারো কারো ক্ষেত্রে বাচ্চা প্রসবের পর পর এই জটিলতা দেখা দিতে পারে প্রিএক্লাম্পসিয়াতে গর্ভফুলে সমস্যার কারণে সাধারণত রক্তচাপ বেড়ে যায় সময়মতো চিকিৎসা শুরু না করলে এটি মা ও সন্তানের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেনিচের পাঁচটি লক্ষণের যেকোনোটি দেখা দিলে গর্ভবতী মাকে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে— হঠাৎ করেই হাত মুখ অথবা পা ফুলে যাওয়া তীব্র মাথাব্যথা হওয়া দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে যাওয়া অথবা চোখে আলোর ঝলকানির মতো কিছু দেখা বুকের পাঁজরের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথা হওয়া ওপরের যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়াএগুলো প্রিএক্লাম্পসিয়া এর লক্ষণ হতে পারে সেক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে নিচের তিনটি ক্ষেত্রে গর্ভবতী নারীর প্রিএক্লাম্পসিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়— গর্ভধারণের আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ থাকলে ইতঃপূর্বে কোনো সন্তান গর্ভে থাকার সময়ে প্রিএক্লাম্পসিয়া হয়ে থাকলে মা অথবা বোনের কখনো প্রিএক্লাম্পসিয়া হয়ে থাকলেউচ্চ রক্তচাপ হলেও গর্ভবতী নারী সুস্থ বোধ করতে পারেন কারণ রক্তচাপ বেড়ে গেলেও সাধারণত বিশেষ কোনো লক্ষণ দেখা যায় না তাই নিয়মিত চেকআপে গিয়ে রক্তচাপ ও প্রস্রাব পরীক্ষা করানো খুব গুরুত্বপূর্ণ গর্ভাবস্থায় হাই প্রেসারের জন্য ঔষধ সেবন করে থাকলে প্রসবের সময়েও সেটি চালিয়ে যাবেন মৃদু অথবা মাঝারি উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে প্রসব বেদনা ওঠার পর থেকে প্রতি ঘণ্টায় রক্তচাপ পর্যবেক্ষণে রাখা হয় এই সময়ে রক্তচাপ স্বাভাবিক মাত্রার কাছাকাছি থাকলে প্রাকৃতিকভাবে অর্থাৎ নরমাল ডেলিভারি এর মাধ্যমে সন্তান জন্মদান করা সম্ভবতীব্র উচ্চ রক্তচাপের ক্ষেত্রে প্রসব বেদনা ওঠার পর থেকে প্রতি ১৫ থেকে ৩০ মিনিট পর পর রক্তচাপ পর্যবেক্ষণ করা হয় এক্ষেত্রে ডাক্তার বিশেষ কৌশল অবলম্বন করে কিংবা সিজারিয়ান সেকশন অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসবের পরামর্শ দিতে পারেনসন্তান প্রসবের পরেও প্রথম কয়েকদিন প্রসূতি নারীর রক্তচাপ পর্যবেক্ষণ করা হবে গর্ভবতী অবস্থায় প্রথমবারের মতো উচ্চ রক্তচাপ শনাক্ত হলে কিংবা আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপের সমস্যা থাকলে প্রসবের পরে ঔষধে কোনো পরিবর্তন আনতে হবে কি না অথবা ঔষধ সেবন করা চালিয়ে যেতে হবে কি না সেই বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন সেজন্য প্রসবের দুই সপ্তাহ পরে একবার এবং দেড় থেকে দুই মাস পরে আরেকবার চেকআপের জন্য ডাক্তারের কাছে যেতে হবেগর্ভাবস্থায় ও দুগ্ধদানকারী অবস্থায় ঔষধের প্রভাব নিয়ে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গবেষণার পরিমাণ অপ্রতুল ঔষধের লিফলেটে গর্ভাবস্থা ও দুগ্ধদানকারী অবস্থার জন্য সতর্কবাণী থাকা মানেই যে ঔষধটা ক্ষতিকর প্রমাণিত হয়েছে তা নয় এমনটা থাকলে দুগ্ধদানকালে ঔষধ চালিয়ে যাওয়া কিংবা পরিবর্তন করা সম্পর্কে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন মায়ের ডিম্বাণু ও বাবার শুক্রাণুর মিলনের ফলে যে ভ্রূণ সৃষ্টি হয় তা স্বাভাবিক প্রেগন্যান্সিতে জরায়ুর ভেতরে স্থাপিত হয় কোন কারণে যদি ভ্রূণটি জরায়ুর বাইরে স্থাপিত হয় এ অবস্থাকে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বলে জরায়ুর (যেখানে গর্ভাবস্থায় সন্তান বেড়ে ওঠে) বাইরে স্থাপিত হওয়ার কারণে ভ্রূণটি বড় ও পরিণত হতে পারে না তবে এই অবস্থাতেও যদি ভ্রূণটি বেড়ে উঠতে থাকে তাহলে গর্ভবতী নারীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হলে গর্ভের সন্তানকে বাঁচানো সম্ভব হয় না ওষুধ প্রয়োগ বা অপারেশনের মাধ্যমে গর্ভপাত ঘটাতে হয় এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির লক্ষণগুলো সাধারণত গর্ভাবস্থার ৪র্থ থেকে ১২ তম সপ্তাহের মধ্যে দেখা যায় কারো ক্ষেত্রে শুরুতে কোন লক্ষণ নাও থাকতে পারে তারা হয়ত আলট্রাসনোগ্রাম করানোর আগে বা মারাত্মক কোন লক্ষণ দেখা দেয়ার আগে বুঝতেই পারেন না যে তাদের এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হয়েছে যদি আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে যায় প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসে অথবা গর্ভধারণের অন্য লক্ষণগুলো থাকে এবং সেই সাথে নিচের যে কোন লক্ষণ থাকে তাহলে আপনার এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হয়ে থাকতে পারে উল্লেখ্য প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ না আসলেও যদি আপনার মনে হয় আপনি গর্ভবতী আর সাথে যদি আপনার নিচের কোন লক্ষণ থাকে তাহলে হাসপাতালে বা আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাতএই রক্তপাত আপনার স্বাভাবিক মাসিকের রক্তপাত থেকে আলাদা হয়ে থাকে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির রক্তপাত পানির মত তরল ও গাঢ় বাদামী রঙের হতে পারে এটি হঠাৎ শুরু হয়ে আবার বন্ধ হয়ে যেতে পারে অনেকে এই রক্তপাতকে স্বাভাবিক মাসিকের রক্ত মনে করেন তারা বুঝতেও পারেন না যে তারা গর্ভবতী গর্ভাবস্থায় মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্ত যাওয়া তুলনামূলকভাবে কমন এবং এটি সবসময় মারাত্মক কোন সমস্যার লক্ষণ নাও হতে পারে তারপরও এ সমস্যা দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত পেট ব্যথাপেটের নিচের দিকে যেকোনো এক পাশে ব্যথা হতে পারে এটি শুরুর পরে আস্তে আস্তে বাড়তে পারে আবার হঠাৎ করে তীব্রভাবে শুরু হতে পারে এটি সারাক্ষণ থাকতে পারে আবার আসা যাওয়াও করতে পারে হজমের বিভিন্ন সমস্যা কোন ব্যাক্টেরিয়ার সংক্রমণ বা গ্যাসের সমস্যার কারণেও পেট ব্যথা হতে পারে তাই পেট ব্যথা মানেই এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হয়েছে এমন নয় কিন্তু আপনার যদি মনে হয় আপনি গর্ভবতী আর সাথে যদি এরকম ব্যথা থাকে তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন কাঁধের শেষ প্রান্তে ব্যথা আপনার কাঁধ যেখানে শেষ হয় ও বাহু যেখানে শুরু হয় সেই জায়গায় এক ধরনের অস্বাভাবিক ব্যথা অনুভূত হতে পারেএর পেছনের সঠিক কারণ জানা নেই তবে এটি এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির কারণে দেহের ভেতর রক্তক্ষরণের লক্ষণ হতে পারে তাই এ সমস্যা অনুভব করলে দেরি না করে সাথে সাথে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন টয়লেটে যাওয়ার সময় অস্বস্তিপ্রস্রাব বা পায়খানা করতে যাওয়ার সময় আপনার ব্যথা হতে পারে সাথে থাকতে পারে ডায়রিয়া গর্ভাবস্থায় প্রস্রাবপায়খানার অভ্যাসে কিছুটা পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন ও পেটের বিভিন্ন সমস্যা যেমন ডায়রিয়া বমির কারণে এমন হতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় এ ধরনের সমস্যা দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া প্রয়োজন ডিম্বনালী ফেটে যাওয়া ও তার লক্ষণ ডিম্বনালী দুইটি ডিম্বাশয় (যেখান থেকে সাধারণত প্রতি মাসে ডিম্বাণু বের হয়) আর জরায়ুর (গর্ভের বাচ্চা যেখানে বড় হয়) মধ্যে সেতু হিসেবে কাজ করে কিছু ক্ষেত্রে এই ডিম্বনালীতে গর্ভের শিশু এতটা বড় হয়ে যায় যে এটি ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হয় একে বলা হয় রাপচার যার অর্থ ফেটে যাওয়ারাপচার খুব মারাত্মক এই ঘটনা ঘটলে মায়ে জীবন বাঁচাতে ও ছিঁড়ে যাওয়া ডিম্বনালী ঠিক করতে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব অপারেশন করা প্রয়োজনরাপচার এর লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে পেটে হঠাৎ করেই তীক্ষ্ণ ও তীব্র ব্যথা অনুভূত হওয়া মাথা ঘুরানো বা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বমি বমি ভাব হঠাৎ করে অনেক ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়াএসব লক্ষণ দেখা দিলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব আপনার নিকটস্থ হাসপাতালের জরুরী বিভাগে যান আপনি যদি গর্ভবতী হন আর আপনার এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির উপসর্গগুলোর যেকোনটি থাকে তাহলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ না আসলেও অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ডাক্তারের কাছে আপনার উপসর্গগুলো খুলে বলুন এরপরে সাধারণত আপনাকে একটি প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে দেওয়া হবে ভ্রূণটি জরায়ুর বাইরে বেড়ে উঠছে কিনা তা নিশ্চিত করতে এবং আপনার অবস্থা সঠিকভাবে মূল্যায়ন করতে আপনাকে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পাঠানো হতে পারে ইনি আপনাকে আল্ট্রাসাউন্ড ও রক্ত পরীক্ষা করার পরামর্শ দেবেন যার মাধ্যমে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি সুনিশ্চিত করা যাবে আপনার ডিম্বনালী ছিঁড়ে যাওয়ার কোন লক্ষণ দেখা গেলে আর দেরি করা যাবে না দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ডিম্বনালী ছিঁড়ে গেলে এর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে কিন্তু আশার কথা হল দ্রুত পদক্ষেপ নিলে এর জটিলতা সম্পূর্ণ এড়ানো সম্ভব উন্নত রাষ্ট্রগুলোতে এখন এধরনের ঘটনায় মায়ের মৃত্যুহার অনেক কমে এসেছে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির মূলত ৩ ধরনের চিকিৎসা রয়েছে– নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখা আপনাকে সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করা হবে এবং নিষিক্ত ডিম্বাণুটি নিজে থেকেই ভেঙে না গেলে নিচের যেকোন একটি চিকিৎসা দেয়া হবে গর্ভের ভ্রূণ যেন আর না বেড়ে উঠতে না পারে সেজন্য মেথোট্রেক্সেট (Methotexate) নামক একটি শক্তিশালী ইনজেকশন দেয়া হয় অপারেশন বা সার্জারি ল্যাপারোস্কোপি সার্জারির মাধ্যমে নিষিক্ত ডিম্বাণুটি ফেলে দেওয়া হয় সাধারণত এর সাথে আক্রান্ত গর্ভনালীও কেটে ফেলা হয় রোগীকে পুরোপুরি অজ্ঞান করে এই অপারেশন করা হয় চিকিৎসক আপনাকে সবগুলো চিকিৎসা পদ্ধতির সুবিধা ও অসুবিধার ব্যাপারে বিস্তারিত জানাবেন তবে আপনার উপসর্গ ও পরীক্ষার রিপোর্টের উপর নির্ভর করে কেবলমাত্র কোন একটি নির্দিষ্ট চিকিৎসা পদ্ধতি আপনার জন্য প্রযোজ্য হতে পারে কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি ভবিষ্যতে আপনার স্বাভাবিকভাবে গর্ভধারণের সম্ভাবনা কমিয়ে দিতে পারে যদিও বেশিরভাগ নারীই পরবর্তীতে আবার গর্ভধারণ করতে পারেন আপনার ডাক্তারের সাথে এ ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করে নিন গর্ভধারণের পর সন্তানকে হারালে তা মনের উপর অনেক চাপ সৃষ্টি করে অনেক মা পরিবারের কোন সদস্য বা নিজের জীবনসঙ্গীকে হারানোর মত কষ্ট অনুভব করেন সময়ের সাথে সাথে এই কষ্ট কমে আসলেও এই অনুভূতি কখনো কখনো মাসের পর মাস থেকে যায় নিজেকে ও নিজের সঙ্গীকে এ মানসিক অবস্থা থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যথেষ্ট সময় দিন আপনি বা আপনার সঙ্গী যদি এ মানসিক অবস্থা থেকে ধীরে ধীরে বেরিয়ে আসতে না পারেন তাহলে ডাক্তারের সাহায্য নিন আপনারা দুইজনেই শারীরিক ও মানসিকভাবে নিজেদের প্রস্তুত মনে করলে আবার গর্ভধারণের চেষ্টা করতে পারেন এক্টোপিক প্রেগনেন্সির জন্য চিকিৎসা নেওয়ার পর আবার গর্ভধারণের চেষ্টা করার আগে অন্তত দুইবার ঋতুস্রাব হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয় যেন আপনার শরীর প্রথমে সুস্থ হয়ে উঠতে পারে মেথোট্রেক্সেট দিয়ে চিকিৎসা নেওয়ার পরে আবার গর্ভধারণের আগে অন্তত ৩ মাস অপেক্ষা করার জন্য বলা হয়ে থাকে কারণ এর মধ্যে গর্ভধারণ করলে তা আপনার বাচ্চার জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বেশিরভাগ নারী যাদের এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হয়েছে তাঁদের একটি ডিম্বনালী কেটে ফেলা হলেও অন্য ডিম্বনালীটি সুস্থ থাকলে তাঁরা আবার গর্ভধারণ করতে পারেন সর্বোপরি ৬৫ নারী এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হওয়ার ১৮ মাসের মধ্যে আবার সফলভাবে গর্ভধারণ করতে পারেন তবে কারো কারো ক্ষেত্রে বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা যেমন আইভিএফ এর প্রয়োজন হতে পারে একবার এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হলে আবার এটি হওয়ার ঝুঁকি থাকে যদিও তা খুব সামান্য (প্রায় ১০)আপনি যদি আবার গর্ভধারণ করে ফেলেন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারকে জানিয়ে রাখুন যেন আগে থেকেই পরীক্ষা করে দেখে নেয়া যায় সব ঠিক আছে কিনা অনেক সময় এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির কারণ পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় না মাঝে মাঝে ডিম্বনালীতে কোন সমস্যা থাকলে যেমন যদি এর পথ সরু হয় বা বন্ধ হয়ে যায় তাহলে এটি হতে পারেনিচের কারণগুলো এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় পেল্ভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ বা পিআইডি সাধারণত কোন যৌন সংক্রমনের কারণে মহিলাদের প্রজনন্তন্ত্রের কোথাও যেমন জরায়ু ডিম্বনালী ইত্যাদি যেকোন স্থানে ইনফেকশন হলে আগে কখনো এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হলে আবার এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হওয়ার ঝুঁকি প্রায় ১০ আগে গর্ভনালীর কোন অপারেশন হলে যেমন সফল না হওয়া বন্ধ্যাত্বকরণ প্রক্রিয়া বা লাইগেশন বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসা যেমন আইভিএফ বন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় অনেক সময় রজঃচক্রের প্রায় মাঝামাঝি সময়ে যে ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু নিঃসরণ অর্থাৎ অভ্যুলেশন হয় তা বাড়িয়ে দেওয়ার জন্য কোন ওষুধ নিয়ে থাকলে তা এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় জন্মনিয়ন্ত্রনের জন্য আইইউডি বা আইইউএস ব্যবহারকালীন অবস্থায় গর্ভধারণ করা এগুলো ব্যবহার করার সময় গর্ভধারণ করার ঘটনা বিরল কিন্তু যদি করে থাকেন তাহলে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি হওয়ার সম্ভাবনাই বেশি ধূমপান বয়স – ৩৫ থেকে ৪০ বছর বয়সী নারীদের এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির ঝুঁকি সবচেয়ে বেশি এনাল ফিসার একধরণের পায়ুপথের রোগ পায়খানা করার সময় খুব বেশি জ্বালাপোড়া হওয়া অথবা ছুরির ধারের মত ব্যথা করা এটি একটি পরিচিত সমস্যা কারো কারো ক্ষেত্রে এই ব্যথা এতই তীব্র হয় যে নিয়মিত মলত্যাগ করাই তাদের জন্য অসহনীয় হয়ে দাঁড়ায় এই লক্ষণগুলো সাধারণত এনাল ফিসার রোগের লক্ষণ বাংলায় এটি গেজ রোগ নামেও পরিচিত পায়ুপথের রোগ বলে অনেকেই এই সমস্যায় দীর্ঘদিন ভোগা সত্ত্বেও সহজে ডাক্তার দেখাতে চান না ফলে দিন দিন গেজ রোগ জটিল আকার ধারণ করে একপর্যায় অপারেশন করা ছাড়া এই রোগ প্রতিকারের উপায় থাকে না অথচ প্রাথমিক গেজ রোগ সম্পর্কে সচেতন হওয়া গেলে খুব সহজেই এই জটিল পরিস্থিতি এড়ানো সম্ভব পায়ুপথের পেছনের যেই অংশে মল জমা থাকে তার নাম রেক্টাম বা মলাশয় মলাশয় থেকে মল বা পায়খানা মলদ্বার দিয়ে বের হয়ে আসে মলদ্বারের মুখের চারপাশে যেই মাংসপেশি থাকে তাতে চাপ প্রয়োগ করে পায়খানার রাস্তার মুখ বন্ধ করা এবং খোলা যায়মলত্যাগের সময় খুব জোরে চাপ দিলে বা পায়খানা শক্ত হলে মলদ্বারের মুখের চারপাশের চামড়া অনেকসময় ফেটে বা চিড়ে যায়৷ মলদ্বারের এই ক্ষতকে এনাল ফিসার বা গেজ রোগ বলেগেজ রোগ হলে মলত্যাগের সময় এই ফাটা বা চিড়ে যাওয়া অংশে প্রচণ্ড জ্বালাপোড়া বা তীক্ষ্ণ ব্যথা অনুভব হয় সেই সাথে পায়ুপথের মাংসপেশি টানটান হয়ে যায় মাংসপেশি টানটান হলে পায়ুপথের মুখটাও সরু হয়ে আসে বা টাইট হয়ে থাকে ফলে মলত্যাগের প্রক্রিয়াটি ভীষণ কষ্টকর হয়ে দাঁড়ায়চিড়ে যাওয়া স্থানে রক্ত প্রবাহ কমে গেলে ফাটল সারতে দীর্ঘদিন সময় লাগতে পারে এভাবে অনেকের দীর্ঘমেয়াদি বা ক্রনিক এনাল ফিসারের সমস্যা দেখা দেয় পায়খানার রাস্তায় তীব্র ও ধারালো ব্যথা হওয়াএনাল ফিসার বা গেজ রোগের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো মলত্যাগের সময় মলদ্বারে তীব্র ও ধারালো ব্যথা হওয়া অনেক সময় রোগীদের মনে হয় যেন পায়ুপথ দিয়ে ধারালো কাঁচের টুকরো বের হচ্ছে এনাল ফিসারের রোগীদের জন্য এই ব্যথাটাই সবচেয়ে যন্ত্রণাদায়ক সাধারণত পায়খানার পর মলদ্বারে এই জ্বালা কয়েক ঘণ্টা পর্যন্ত থাকতে পারে পায়খানার সাথে উজ্জ্বল লাল রঙের রক্ত যাওয়াপায়খানার গায়ে বা ব্যবহৃত টয়লেট পেপারে তাজা লাল রক্তের ছোপ দেখা যেতে পারে শুধুমাত্র চামড়ার কিছু অংশ ছিঁড়ে রক্ত যায় বলে এক্ষেত্রে সাধারণত বেশি রক্তপাত হয় না যেহেতু পায়ুপথের মুখের কাছাকাছিই এই রক্তক্ষরণ হয় তাই রক্তের রঙ উজ্জ্বল লাল হয়ে থাকে আরও ভেতর থেকে রক্তক্ষরণ হলে রক্তের রঙ গাঢ় বা কালচে লাল হতো পায়ুপথে চুলকানি হওয়াএনাল ফিসার রোগে পায়খানার রাস্তার মুখে চুলকানি হতে পারে গেজ রোগের সবচেয়ে সাধারণ কারণ হলো কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য পায়খানা শক্ত হলে অনেকে টয়লেটে যেতে চায় না কারণ তখন মলত্যাগ করতে কিছুটা কষ্ট হয় কিন্তু পেটের ভেতর পায়খানা জমিয়ে রাখলে সেটা দিন দিন আরও শক্ত থাকে একসময় সেই শক্ত পায়খানা বের করতে গেলে পায়ুপথের চামড়া ছিঁড়ে গিয়ে দেখা দেয় এনাল ফিসারগর্ভবতী অবস্থায় বিশেষ করে শেষ তিন মাসে ও নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে বাচ্চা হওয়ার পরে এনাল ফিসার দেখা দিতে পারে তবে সেক্ষেত্রে গেজ রোগ হওয়ার পদ্ধতি একটু ভিন্নকখনও কখনও ডায়রিয়ার কারণেও গেজ রোগ হতে পারে আরও কিছু অসুখ বা ওষুধের কারণেও এনাল ফিসার হতে পারে যে সব রোগের কারণে এনাল ফিসার দেখা দিতে পারে— পরিপাকতন্ত্রের প্রদাহজনিত রোগ বা ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ (IBD) কোলোরেক্টাল বা পায়ুপথের ক্যান্সার যৌনরোগ যেমন এইচআইভি সিফিলিস ও হার্পিস সিমপ্লেক্স সোরিয়াসিস নামক ত্বকের প্রদাহজনিত রোগ Pruritus ani নামের পায়ুপথের মুখের চুলকানি রোগ ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া বা ফাঙ্গাস সংঘটিত চর্মরোগযেসব ওষুধ সেবন করলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে এনাল ফিসার দেখা দিতে পারে—Anginaজাতীয় বুকের ব্যথায় ব্যবহৃত নিকোর‍ান্ডিল কেমোথেরাপিতে ব্যবহৃত কিছু ওষুধ আফিমজাতীয় ব্যথার ওষুধ (Opioids) যেমন ট্রামাডল টাপেন্টাডল মরফিন ও পেথিডিন মলত্যাগের পর গরম পানির সেঁক নেয়াএকটি বোলে বা ডিশে কুসুম গরম পানি নিয়ে সেটাতে কিছুক্ষণ বসতে পারেন যাতে কোমর থেকে মলদ্বার পর্যন্ত পানির নিচে থাকে কুসুম গরম পানি মলদ্বারের মাংসপেশিকে রিল্যাক্স বা শিথিল করতে সাহায্য করে ফলে ব্যথা কমে আসে একে ইংরেজিতে সিটজ ব্যাথ (Sitz bath) বলেশুধু মলত্যাগ করার পরেই এটি নেওয়া করা যাবে বিষয়টা এমন নয় দিনে ২ থেকে ৩ বার গরম পানির সেঁক নেওয়া যায় একটি গবেষণায় দেখা গেছে যারা এই পদ্ধতি অবলম্বন করেছে গেজ রোগে তারা বেশ স্বস্তি পেয়েছে প্যারাসিটামল সেবন করাএনাল ফিসার এর ব্যথা কমানোর ঔষধ হিসেব প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে প্যারাসিটামল সাধারণত ৫০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট হিসেবে পাওয়া যায় ব্যথা হলে ২টি ট্যাবলেট অর্থাৎ ১০০০ মিলিগ্রাম প্যারাসিটামল একেবারে সেবন করতে পারেন এভাবে ৪ থেকে ৬ ঘণ্টা পরপর ঔষধ খাওয়া যায়তবে দিনে যাতে ৮টা ট্যাবলেট অর্থাৎ ঔষধের পরিমাণ ৪০০০ মিলিগ্রামের বেশি না হয় সেই বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে উল্লেখ্য এই হিসাবটি একজন অন্যথায় সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য যার ওজন ৫০ কেজির বেশি আপনার শারীরিক অবস্থা এমনটা না হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে প্যারাসিটামলের সঠিক ডোজ জেনে নিতে হবেপ্রয়োজন পড়লে ব্যথার জন্য আইবুপ্রোফেন খাওয়া যায় তবে রক্তক্ষরণ হলে আইবুপ্রফেন এড়িয়ে চলাই ভালো কারণ এটি রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ায়তবে ট্রামাডল ও টাপেন্টাডল জাতীয় ব্যথানাশক এড়িয়ে চলতে হবে ট্রামাডলটাপেন্টাডল সেবন করলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে ইতোমধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে এই জাতীয় ব্যথানাশক সেবনে এই সমস্যা গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে৷ মলদ্বারের মুখে পেট্রোলিয়াম জেলিজাতীয় পিচ্ছিল করার পদার্থ প্রয়োগপেট্রোলিয়াম জেলি বা অন্যান্য পিচ্ছিলকারী পদার্থ মলদ্বারের মুখে ব্যবহার করা যায় এতে মলত্যাগের সময় ছেঁড়া জায়গায় ঘর্ষণের মাধ্যমে ব্যথা অনুভব হওয়ার তীব্রতা কমবে মলত্যাগের সময় জোরে চাপ দেয়া থেকে বিরত থাকাপায়খানা করার সময় জোরে চাপাচাপি করলে গেজ রোগের জায়গাটি আরও ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে ব্যথা তীব্র হয়ে যেতে পারে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে এনাল ফিসার প্রতিরোধ করা সম্ভব এগুলো হলো— পায়খানার বেগ আসলে তা আটকে রাখা যাবে না এতে পায়খানা শক্ত হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে পরবর্তীতে চাপ দিয়ে পায়খানা করতে গেলে সেখান থেকে এনাল ফিসার দেখা দিতে পারে পায়খানা খুব শক্ত হলে এনাল ফিসার সারতেও দেরি হয় তাই পায়খানার চাপ আসলে দেরি না করে টয়লেটে চলে যেতে হবেতবে এনাল ফিসারের রোগীদের জন্য পায়খানা করার সময় হওয়া প্রচণ্ড ব্যথাটাই সবচেয়ে কষ্টদায়ক তাই যথাসময়ে মলত্যাগ করার উপদেশ দেওয়া হলেও তা মেনে চলা কঠিন হয়ে পড়ে এজন্য পায়খানা নরম রাখতে হবে এবং উপরের ব্যথা কমানোর উপদেশগুলো মেনে চলতে হবে এনাল ফিসার প্রতিরোধে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার কোনো বিকল্প নেই৷ এজন্য কিছু বিষয় মেনে চলা জরুরি যেমন— পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ আছে এমন খাবার খেতে হবে যেমন – সবুজ শাকসবজি ফলমূল ডাল লাল আটা লাল চাল ইত্যাদি কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে দৈনিক প্রায় ৩০ গ্রাম ফাইবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় তবে খাবারের তালিকায় ফাইবারের পরিমাণ হুট করে না বাড়িয়ে ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করতে হবে বেশি বেশি ফাইবার এর সাথে পরিমাণ মত পানি না খেলে নানান স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন ভুসি খাওয়ার উপকারিতা ও নিয়ম সম্পর্কে জানতে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি লেখাটি পড়তে পারেন নিয়মিত শরীরচর্চা বা হালকা ব্যায়াম করতে পারেনপড়ুন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার উপায়৩ পায়ুপথ সবসময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন ও শুকনো রাখতে হবে মলত্যাগের পর জোরে ঘষাঘষি না করে আলতোভাবে জায়গাটি পরিষ্কার করে নিতে হবে এর ফলে গেজ রোগ হলেও তা দ্রুত সেরে উঠবে এবং ইনফেকশন বা পুঁজ জমে ঘা হওয়ার মতো জটিলতা এড়িয়ে চলা সম্ভব হবে কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন যদি মনে হয় আপনার পায়ুপথে কোনো ফাটল রয়েছে বা গেজ রোগের কোনো লক্ষণ রয়েছে তাহলে দেরি না করে ডাক্তার দেখানো উচিত অনেকে কবিরাজি বা ভেষজ ওষুধ কিংবা এনাল ফিসার এর হোমিও চিকিৎসা দিয়ে এগুলো সারানোর চেষ্টা করতে করতে অনেক দেরি করে ফেলেন ফলে রোগটি আরও জটিল আকার ধারণ করে তাই এগুলোর পেছনে সময় ও অর্থ নষ্ট করে নিজের ক্ষতি করবেন না বিব্রত বা সংকোচ বোধ করে ডাক্তার দেখানো থেকে বিরত থাকবেন না এনাল ফিসার একটি কমন সমস্যা৷ ডাক্তাররা প্রতিনিয়তই এমন অসংখ্য রোগীর চিকিৎসা করেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে এনাল ফিসার চিকিৎসা ছাড়াই ভালো হয়ে যায় তবে ডাক্তারের কাছে গেলে তিনি একই ধরনের উপসর্গযুক্ত অন্য কোনো সমস্যা (যেমন পাইলস) আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে পারবেন এছাড়াও যেসব নিয়ম মেনে চললে আপনার এনাল ফিসারের লক্ষণগুলো উপশম হবে এবং পুনরায় গেজ রোগ হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে সে ব্যাপারেও তিনি পরামর্শ দিবেন আমাদের আর্টিকেলে তুলে ধরা পরামর্শগুলোর পাশাপাশি ডাক্তারের পরামর্শ মেনে চললে দ্রুত গেজ রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে এনাল ফিসার ও পাইলসের লক্ষণগুলোর মধ্যে কিছুটা মিল থাকলেও এই দুইটি পৃথক দুইটি রোগ দুটি রোগেই পায়ুপথে চুলকানি হতে পারে এবং টাটকা লাল রক্ত যেতে পারে তবে এনাল ফিসারে রক্ত খুব অল্প পরিমাণে যায় পাইলস এবং এনাল ফিসার এই দুইটির মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে—পাইলস হলে পায়ুপথে নরম গোটার মত দেখা দেয় গোটাগুলো সাধারণত মলত্যাগের পরে বের হয়ে আসে আবার কিছু সময় পর নিজে নিজেই ভেতরে ঢুকে যায় অথবা আঙ্গুল দিয়ে ভেতরে ঢোকাতে হয় এছাড়া পাইলস হলে পায়ুপথে শ্লেষ্মার মতো দেখতে পিচ্ছিল কিছু পদার্থ বের হতে পারেএনাল ফিসার বা গেজ রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত এসব লক্ষণ দেখা যায় না আর এক্ষেত্রে প্রতিবার মলত্যাগের সময়ই তীব্র ব্যথা হয় পাইলসে সাধারণত ব্যথা হয় না পাইলস বা অর্শ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আমাদের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন ঘরোয়া চিকিৎসা নিয়ে এনাল ফিসার প্রতিরোধের পরামর্শগুলো মেনে চললে প্রায় অর্ধেক রোগীর এনাল ফিসার ভালো হয়ে যায় বাকিদের আরও চিকিৎসা প্রয়োজন হয় প্রথমে কিছু ওষুধ সেবন এবং মলম লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয় এতেও কাজ না হলে এনাল ফিসার অপারেশনের প্রয়োজন হয়গেজ রোগ প্রতিরোধের পরামর্শগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অপারেশনের প্রয়োজন পড়বে না অভ্যাসে স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন আনা কঠিন মনে হতে পারে যেমন প্রতিবার খাওয়ার সময়ে চিন্তা করতে হবে খাবারে ফাইবার কতটুকু আছে তার চেয়ে একটি ওষুধ খেয়ে বা অপারেশন করে সমস্যা দূর হয়ে যাওয়া অনেকের কাছেই সহজতর মনে হতে পারেকিন্তু এই রোগ যাতে আবার না হয় সেজন্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো গড়ে তোলা জরুরী অপারেশন করার পরেও ডাক্তার আপনাকে ফাইবারযুক্ত খাবার খাওয়া চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দিবে অন্যথায় কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে আবারও গেজ রোগ দেখা দিতে পারে অর্থাৎ ঔষধ সেবন ও অপারেশন করলেও গেজ রোগ বা এনাল ফিসারের স্থায়ী সমাধানে অভ্যাস পাল্টে সুস্থ জীবনধারা বেছে নেওয়ার বিকল্প নেইএনাল ফিসারের ঔষধএনাল ফিসারের চিকিৎসায় ডাক্তার অনেক ধরনের ওষুধ সেবনের এবং মলম ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারেন ওষুধগুলো কেবল চিকিৎসকের পরামর্শক্রমেই সেবন করা উচিত তা না হলে হিতে বিপরীত হতে পারে গেজ রোগের চিকিৎসায় সবচেয়ে কার্যকর ওষুধগুলোর মধ্যে রয়েছে— জোলাপ বা ল্যাক্সেটিভ এগুলো সিরাপ ট্যাবলেট বা বড়ি হিসেবে পাওয়া যায় এই ওষুধগুলো পায়খানায় পানির পরিমাণ ধরে রেখে তা নরম রাখে ও পায়খানা শক্ত হওয়া প্রতিরোধ করে একেক বয়সের মানুষের বিভিন্ন সমস্যার জন্য ভিন্ন ভিন্ন ওষুধ ব্যবহার করতে হয় আপনার জন্য উপযুক্ত ওষুধটি বেছে নিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন গ্লিসারাইল ট্রাইনাইট্রেট ও ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার মলম এগুলো মলদ্বারের ভেতরের ও আশেপাশের পেশি ও রক্তনালীগুলোকে প্রসারিত করে এর ফলে ফাটলের স্থানে রক্ত সরবরাহ বাড়ে ও তা দ্রুত সেরে ওঠে সেই সাথে পায়ুপথের ভেতরে চাপ কমে যাওয়ার ফলে ব্যথাও কমে যায়মলম দুটি বেশ কার্যকর সঠিক উপায়ে ব্যবহার করলে প্রতি ১০ জন ক্রনিক ফিসারের রোগীর মধ্যে ৭ জনের ফাটল দেরে যায় এগুলো সাধারণত কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ বা ফাটল সম্পূর্ণরূপে সেরে না ওঠা পর্যন্ত ব্যবহার করতে হয় তবে মলমগুলোর বেশ কয়েকটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যবহার করা একেবারেই ঠিক নয় এছাড়া শিশু গর্ভবতী মা বা মাথাব্যথার সমস্যা আছে এমন কারও ক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া এসব মলম ব্যবহার করা ঠিক নয় টপিক্যাল অ্যানেস্থেটিকএগুলো শরীরের বহির্ভাগে ব্যবহার করার চেতনানাশক মলম বা জেল হিসেবে পাওয়া যায় অসহনীয় ব্যথা হলে এটি ব্যবহার করা হয় এতে ফাটল সারে না তবে ব্যথা উপশম হয়এনাল ফিসারের চিকিৎসায় ডাক্তারের সাথে নিয়মিত ফলোআপে থাকতে হয় ৮ সপ্তাহের মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে সবকিছু বিবেচনা করে ডাক্তার আপনাকে পরবর্তী চিকিৎসার জন্য একজন বিশেষজ্ঞ কোলোরেক্টাল সার্জনের কাছে রেফার করতে পারেনএনাল ফিসার অপারেশন গেজ রোগ অন্য কোনো চিকিৎসায় সারানো না গেলে অপারেশনের পরামর্শ দেয়া হয় সার্জারিকে সাধারণত এনাল ফিসারের সবচেয়ে কার্যকরী চিকিৎসা হিসেবে গণ্য হয় এক্ষেত্রে ৯০এর বেশি রোগী দীর্ঘমেয়াদি সুফল লাভ করে থাকেন তবে এর থেকে নানান জটিলতা সৃষ্টিরও ঝুঁকি থাকেএনাল ফিসারের চিকিৎসায় অনেক ধরনের অপারেশন করা যায় এগুলো খুব জটিল অপারেশন না সাধারণত রোগী সেদিনই বাড়ি ফিরে যেতে পারে এনাল ফিসার অপারেশন এর মধ্যে বহুল প্রচলিত দুটি পদ্ধতি হলো— ল্যাটারাল স্ফিংকটারেকটোমিএ পদ্ধতিতে পায়ুপথের ভেতরের দিকের মাংসপেশি অপারেশনের ছুরি দিয়ে একটু ছাড়িয়ে দেয়া হয় এতে করে মাংসপেশি রিলাক্স হয় আর পায়ুপথের ভেতরের চাপ কমে আসে এটি এনাল ফিসার সারাতে সাহায্য করে এবং নতুন ফাটল সৃষ্টি প্রতিরোধ করে অ্যাডভান্সমেন্ট অ্যানাল ফ্ল্যাপ এনাল ফিস্টুলা এক প্রকার পায়ুপথের রোগ খাবার পেটে গিয়ে হজম হওয়ার পর অবশিষ্ট অংশ পায়খানা হিসেবে আমাদের মলাশয়ে জমা হতে থাকে মলাশয় ভরে গেলে পায়খানার চাপ তৈরি হয় এবং মলত্যাগের সময়ে পায়ুপথের মাধ্যমে পায়খানা মলদ্বার দিয়ে শরীর থেকে বের হয়ে আসেএনাল ফিস্টুলা এক প্রকার পায়ুপথের রোগ খাবার পেটে গিয়ে হজম হওয়ার পর অবশিষ্ট অংশ পায়খানা হিসেবে আমাদের মলাশয়ে জমা হতে থাকে মলাশয় ভরে গেলে পায়খানার চাপ তৈরি হয় এবং মলত্যাগের সময়ে পায়ুপথের মাধ্যমে পায়খানা মলদ্বার দিয়ে শরীর থেকে বের হয়ে আসেমলদ্বারের আশেপাশের চামড়ায় কখনো কখনো জীবাণুর আক্রমণে ইনফেকশন বা ফোঁড়া হতে পারে অনেক সময় এসব ফোঁড়া থেকে পুঁজ বের হয়ে গভীর ক্ষত সৃষ্টি হয় যা পায়ুপথের সাথে একধরণের রাস্তা তৈরি করে ফোঁড়া বা অন্য কোনো কারণে মলদ্বার ছাড়া পায়ুপথের সাথে এই ধরণের অস্বাভাবিক রাস্তা তৈরি হলে সেটিকে এনাল ফিস্টুলা বা মলদ্বারের ফিস্টুলা বলে অনেকের কাছে এটি ভগন্দর নামেও পরিচিতএধরণের ফিস্টুলা বা ভগন্দর হলে মলদ্বারের আশেপাশে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া সহ নানান রকম লক্ষণ দেখা দিতে পারে এই ফিস্টুলাগুলো সাধারণত চিকিৎসা ছাড়া নিজে থেকে ভালো হয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ফিস্টুলা সারাতে অপারেশন করার প্রয়োজন হয় মলদ্বারের ফিস্টুলা বা ভগন্দর হলে বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দেয় যেমন— মলদ্বারের আশেপাশের চামড়ায় জ্বালা পোড়া বা চুলকানি হওয়া মলদ্বারের আশেপাশে ব্যথা হওয়া সাধারণত সারাক্ষণ একটি টনটনে ব্যথা থাকে যা বসলে হাঁটাচলা করলে কাশি দিলে বা পায়খানা করার সময়ে আরও বেড়ে যায় মলদ্বারের আশেপাশের জায়গা থেকে দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজ বের হওয়া মলদ্বারের আশেপাশের জায়গাটি ফুলে লাল হয়ে যাওয়া সাথে ফোঁড়া থাকলে জ্বরও আসতে পারে পায়খানার সাথে রক্ত ও পুঁজ বেরিয়ে আসা কিছু ক্ষেত্রে পায়খানার উপর নিয়ন্ত্রণ চলে যেতে পারে অর্থাৎ পায়খানার চাপ আসলে রোগী তা আর চেপে রাখতে পারে না অথবা পায়খানার চাপ এসেছে তা বুঝার আগেই পায়খানা হয়ে যেতে পারেঅনেক ক্ষেত্রে মলদ্বারের আশেপাশের চামড়ায় ছিদ্রের মত ফিস্টুলার রাস্তাটি বাহির থেকে দেখা যেতে পারে তবে সাধারণত রোগীর নিজের পক্ষে এটি দেখা কষ্টকর বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই মলদ্বারের আশেপাশের ফোঁড়া থেকে ফিস্টুলা তৈরি হয় সাধারণত পুঁজ বের হয়ে যাওয়ার পরে ফোঁড়াটি ঠিকমতো না শুকালে এমনটা হয়এছাড়া আরও কিছু কারণে এনাল ফিস্টুলা হতে পারে যেমন— টিবি (যক্ষ্মা) / এইচআইভি (এইডস) এসব রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রে এনাল ফিস্টুলা দেখা দিতে পারে মলদ্বারের অপারেশন পায়খানার ছিদ্রপথের আশেপাশে কোনো অপারেশন হয়ে থাকলে এরপর সেখান থেকে নতুন রাস্তা তৈরি হয়ে এনাল ফিস্টুলা দেখা দিতে পারে৷ ক্রনস ডিজিজ এটি একধরনের অসুখ যেখানে পরিপাক নালীতে জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে এতে ডায়রিয়া পেটে ব্যথা হওয়া কিংবা পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া সহ নানান লক্ষণ দেখা দেয় ডাইভারটিকুলাইটিস এই অসুখটি হলে পরিপাক নালীর শেষ অংশ (বৃহদান্ত্রের) গায়ে কিছু অংশ ফুলে থলির মত হয়ে যায় ও সেখানে ইনফেকশন হয় হাইড্রাডেনাইটিস সাপুরাটিভা এটি এক ধরনের অসুখ যেখানে শরীরের যে অংশগুলোতে ঘাম বেশি হয় সেখানের চামড়ায় ফোঁড়া হয় এবং চামড়া মোটা হয়ে দাগের মত হয়ে যায় এনাল ফিস্টুলার লক্ষণগুলো অনেকদিন ধরে থাকলে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে ডাক্তার লক্ষণগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইবেন এছাড়া নাড়িভুঁড়ি বা পেটে অন্য কোনো ধরণের সমস্যা আছে কি না তাও জানতে চাইবেনএ সময় ডাক্তার প্রয়োজনে মলদ্বারের আশেপাশের জায়গাটি পরীক্ষা করে দেখবেন ফিস্টুলার অবস্থা বুঝার জন্য প্রয়োজনে মলদ্বার দিয়ে আলতোভাবে এক আঙুল প্রবেশ করিয়েও পরীক্ষা করে দেখতে পারেন এই পদ্ধতিকে ডিআরই (ডিজিটাল রেকটাল এক্সামিনেশন) বলা হয়পরীক্ষা করে এনাল ফিস্টুলা আছে এমন মনে হলে ডাক্তার প্রয়োজনে রোগীকে এই রোগের বিশেষজ্ঞ ডাক্তার (কোলোরেক্টাল সার্জন) এর কাছে যাওয়ার পরামর্শ দিবেন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার আরও কিছু পরীক্ষা নিরীক্ষা করে ফিস্টুলা সম্পর্কে নিশ্চিত হবেন এবং উপযুক্ত চিকিৎসা অথবা অপারেশনের সিদ্ধান্ত নিবেনএক্ষেত্রে যে পরীক্ষাগুলো করা হতে পারে সেগুলো হলো— পুনরায় ডিআরই বা পায়ুপথে আঙুল ঢুকিয়ে পরীক্ষা করে দেখা হতে পারে প্রোক্টোস্কোপি করা হতে পারে—যেখানে মলদ্বার দিয়ে একটি নলের মত বিশেষ যন্ত্র ঢুকানো হয় এটির সাহায্যে ফিস্টুলার রাস্তা আছে কি না তা ভালোভাবে দেখা যায় এছাড়া আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান এমআরআই অথবা সিটি স্ক্যান ইত্যাদি পরীক্ষাও করা হতে পারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এনাল ফিস্টুলার চিকিৎসা হিসেবে অপারেশন করা হয় কারণ এটি সাধারণত অপারেশন ছাড়া পুরোপুরি ভালো হয় না এক্ষেত্রে যেসব অপারেশন করা হতে পারে সেগুলো হলো— ফিস্টুলোটোমি এই পদ্ধতিতে পুরো ফিস্টুলার নালী বা রাস্তাটিকে কেটে বাকি পুঁজগুলো বের করে দেয়া হয় এরপর প্রয়োজন অনুযায়ী সেলাই করে কিংবা সেলাই ছাড়া এটিকে শুকাতে দেয়া হয় শুকানোর পর জায়গাটা আগের মত সুস্থ হয়ে যায়৷ সেটন পদ্ধতি এই পদ্ধতিতে ফিস্টুলার ভেতরে কয়েক সপ্তাহের জন্য সেটন নামক এক ধরণের বিশেষ সুতা ঢুকিয়ে রাখা হয় এই সুতা পুঁজগুলো শুষে নিয়ে ফিস্টুলা শুকাতে সহায়তা করে এরপর আরও কয়েক ধাপে ফিস্টুলাটি পুরোপুরি সারিয়ে তোলা হয়৷ অ্যাডভান্সমেন্ট এনাল ফ্ল্যাপ এই পদ্ধতিতে শরীরের অন্য একটি অংশ থেকে (সাধারণত পায়ুপথের শেষভাগ থেকে) এক টুকরো টিস্যু বা মাংস এনে ফিস্টুলার রাস্তাটিতে যোগ করা হয় এভাবে নতুন অংশ যোগ করলে ফিস্টুলাতে রক্ত চলাচল বাড়ে ফলে এটি দ্রুত সুস্থ হয়ে যায় ও ফিস্টুলার পুরো রাস্তাটি কেটে ফেলার আর প্রয়োজন হয় না লিফট পদ্ধতি পায়খানার রাস্তায় যেসব মাংসপেশি পায়খানার চলাচল নিয়ন্ত্রণ করে সেসব পেশির ভেতরে কোনো ফিস্টুলা হলে সেক্ষেত্রে এই পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়৷ এ পদ্ধতিতে পেশিগুলো না কেটে শুধু ফিস্টুলাটি সরানোর ব্যবস্থা করা হয়এসকল পদ্ধতি ছাড়াও আজকাল লেজার ফাইব্রিন গ্লু এসব পদ্ধতি ব্যবহার করে সরাসরি অপারেশন ছাড়াও এনাল ফিস্টুলার চিকিৎসা করা হয় ফিস্টুলার চিকিৎসার পরে সাধারণত সারাদিন হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন পড়ে না তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে অপারেশনের পর কয়েকদিন হাসপাতালে থাকার দরকার হতে পারেফিস্টুলার চিকিৎসার সবগুলো পদ্ধতিতেই কিছু সুবিধা ও কিছু অসুবিধা রয়েছে সার্বিক অবস্থা বিবেচনা করে ডাক্তার রোগীর জন্য যেই পদ্ধতিটি ভালো হবে সেটি বেছে নিবেন এনাল ফিস্টুলার অপারেশনের পর সাধারণত যেসব অসুবিধা দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— ইনফেকশন সাধারণত অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে এটি সেরে যায় তবে অনেক বেশি ইনফেকশন হলে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেয়ার প্রয়োজন হতে পারে পুনরায় ফিস্টুলা ফিরে আসা অপারেশন করে অপসারনে পরও অনেক সময় একই জায়গায় আবার ফিস্টুলা দেখা দিতে পারে পায়খানার চাপ নিয়ন্ত্রণ করতে না পারা ফিস্টুলার সবধরনের চিকিৎসাতেই এই অসুবিধাটি দেখা দিতে পারে তবে সাধারণত এতে খুব বেশি সমস্যা হয় না এবং এটি নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায় যোনিপথে প্রসবের সময় কিছু ক্ষেত্রে প্রসূতির যোনি ও পায়ুর অন্তর্বর্তী অংশটি কাটতে হতে পারে এই প্রক্রিয়াটির নাম এপিসিওটমি এটি কাটার ফলে যোনিপথের বাইরের মুখটি বড় হয় এবং সন্তান আরও সহজে বের হয়ে আসতে পারে সাধারণত নরমাল ডেলিভারিতে নিয়মিতভাবে এপিসিওটমি করতে নিরুৎসাহিত করা হয় অর্থাৎ আগে থেকে এপিসিওটমি করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় না এই প্রক্রিয়াটি শুধু বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে প্রয়োজন পড়লে সেটা প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হওয়া পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যেসব কারণে এপিসিওটমি করা হয় সেসব হলো—যদি সন্তান অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান না পাওয়ার কারণে তার শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া (ফিটাল ডিসট্রেস) শুরু হয় এবং তাকে তাড়াতাড়ি গর্ভের ভেতর থেকে বের করে আনার প্রয়োজন হয় যদি গর্ভের শিশুর ব্রিচ প্রেজেন্টেশন থাকে যদি গর্ভের শিশু আকারে বড় হয় যদি যোনিপথে প্রসবের ক্ষেত্রে ফোরসেপ বা ভেনটুস জাতীয় যন্ত্রপাতি ব্যবহার করার প্রয়োজন হয়ে থাকে যদি প্রসবকালে পেরিনিয়াম কিংবা পায়ু ছিঁড়ে যাওয়ার আশংকা থাকে যদি প্রসবের সময় আপনার এপিসিওটমির দরকার হয় তাহলে প্রথমে আপনার অথবা আপনার পরিবারের কারও কাছে থেকে এই ছোটো অপারেশনটি করার জন্য লিখিত সম্মতি নেওয়া হবে তারপর কাটার জায়গাটি অবশ করা হবে যদি প্রসবের জন্য আপনাকে অ্যানেস্থেসিয়া দেওয়া হয়ে থাকে তাহলে অবশ করার বাড়তি কোনো ঔষধের প্রয়োজন নেই যোনি ও পায়ুর অন্তর্বর্তী অংশটিকে পেরিনিয়াম বলে অ্যানেস্থেসিয়া ব্যবহার করা না হলে অথবা অ্যানেস্থেসিয়ার কার্যকারিতা শেষ হয়ে আসলে আপনার পেরিনিয়াম অবশ করার জন্য ইনজেকশনের মাধ্যমে ঔষধ দেওয়া হবে এপিসিওটমির কাটা কয়েকভাবে দেওয়া যায় সবচেয়ে নিরাপদ উপায়টি হলো আপনার পেরিনিয়ামের উপরের দিকে মধ্যবিন্দু থেকে কোণাকুণি ডানে বা বামে নিচের দিকে কাটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে ডান দিকে এই কাটা দেওয়া হয় সাধারণত এই উপায়ে এপিসিওটমি দেওয়ারই পরামর্শ দেওয়া হয়এর ফলে কাটা বড় হয়ে গিয়ে পায়ুপথ ছিঁড়ে যাওয়ার আশঙ্কা তুলনামূলকভাবে কম থাকে এ ছাড়া পেরিনিয়ামে উপর থেকে নিচের দিকে মাঝ বরাবর সোজা করেও কাটা যায় এরকম আরও কিছু উপায় রয়েছে যেগুলো তুলনামূলক কম নিরাপদ অর্থাৎ কাটার পর সন্তান প্রসবের সময় ক্ষত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তাই সেগুলো সাধারণত করা হয় না সন্তান প্রসবের পরপরই এই কাটা সেলাই করে ফেলা হয় সেলাইয়ের জন্য এমন সুতা ব্যবহার করা হয় যা সেলাই শুকিয়ে গেলে আপনার শরীরের সাথে মিশে যায় এতে করে সেলাই খোলার জন্য আবার হাসপাতালে যাওয়ার দরকার পড়ে না এপিসিওটমির পর ২ থেকে ৩ সপ্তাহ হালকা ব্যথা থাকতে পারে বিশেষ করে হাঁটা অথবা বসার সময়সেলাইয়ের সুতার কারণে কিছুটা অস্বস্তি বোধ হতে পারে যা স্বাভাবিক প্রস্রাব করার সময় সেলাই কিছুটা জ্বলতে পারে এবং পায়খানা করার সময় ব্যথা হতে পারে চামড়ার কাটা অংশটি শুকাতে প্রসবের পর কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে এরপর জায়গাটিতে ব্যথা ধীরে ধীরে কমে আসে এপিসিওটমি বা সাইড কাটা সুন্দর মতো সেরে ওঠার জন্য কিছু বিষয় লক্ষ রাখতে হবে যেমন—১ কাটা স্থানের যত্ন নেওয়ার জন্য এবং ইনফেকশনের আশঙ্কা কমানোর জন্য কাটা জায়গাটি পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণ এজন্য যা করণীয়—দিনে একবার গোসল করা অথবা কম পক্ষে কাটা জায়গাটি ধুয়ে পরিষ্কার করা কাটা জায়গা পরিষ্কার করার জন্য শুধু পানি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়স্যানিটারি ন্যাপকিন বা প্যাড নিয়মিত বদলানোবাথরুমে যাওয়ার আগে ও পরে প্রতিবার ভালো করে সাবান দিয়ে হাত ধোয়াপ্রতিদিন এক ফাঁকে বিছানার ওপর একটি তোয়ালে বিছিয়ে শরীরের নিচের অংশের কাপড় ও অন্তর্বাস খুলে আরাম করে শুয়ে থাকতে পারেন এতে করে কাটা অংশে খোলা বাতাস পৌঁছাবে যা কাটা সেরে উঠতে সাহায্য করবেপ্রস্রাবপায়খানা করার পর পানি দিয়ে ধোয়ার বেলায় সবসময় সামনে থেকে পেছনে পরিষ্কার করার চেষ্টা করতে হবে ২ কাটা সেরে ওঠার সময় শরীরকে স্বস্তি ও বিশ্রাম দেওয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ নবজাতকের যত্ন নেওয়ার মাঝে নিজের যত্ন নেওয়া অনেকসময় গৌণ হয়ে যায় তবে চেষ্টা করুন নিজের শরীরকেও সমান গুরুত্ব দেওয়ার যখন আপনার শিশু ঘুমিয়ে থাকবে তখন আপনিও ঘুমিয়ে নিন সারাদিনের কাজ ও বিশ্রামের মাঝে একটি ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করুন প্রয়োজনে পরিবারের অন্যদের সাহায্য নিন ৩ ব্যথা কমানোর উপায়ঃ এপিসিওটমির পর কয়েক সপ্তাহ ব্যথা থাকবে এমনটাই স্বাভাবিক তবে ব্যথা কমানোর জন্য কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন যেমন—একটি রুমাল বা তোয়ালের ভেতর বরফ পেঁচিয়ে সেটা দিয়ে কাটা স্থানে ঠান্ডা সেঁক দিতে পারেন কুসুম গরম পানিতে গোসল করতে পারেন এবং টয়লেট করার পর কুসুম গরম পানি ব্যবহার করতে পারেন এর ফলে পেরিনিয়ামের পেশিতে রক্ত সরবরাহ বাড়বে যা ব্যথা উপশমে সাহায্য করতে পারে বসার জন্য বাজারে পাওয়া বিশেষ ধরনের কুশন ব্যবহার করতে পারেন কুশনটি ডোনাটের আকৃতির হয় এবং বাতাস দিয়ে ফোলানো থাকে এটি আপনাকে আরাম করে বসতে সাহায্য করবে ব্যথার জন্য ব্যথানাশক ঔষধ খেতে পারেন বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ সন্তানকে বুকের দুধ দিয়ে থাকলে ব্যথানাশক হিসেবে প্যারাসিটামল ব্যবহার করা নিরাপদএ ছাড়া এসময় আইবুপ্রোফেনও ব্যবহার করা যাবে তবে সন্তানকে বুকের দুধ দিয়ে থাকলে ব্যথানাশক হিসেবে অ্যাসপিরিন ব্যবহার করতে নিষেধ করা হয় কারণ অ্যাসপিরিন বুকের দুধের সাথে মিশে আপনার সন্তানের শরীরে চলে যেতে পারে এতে শিশুর শারীরিক জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে ৪ প্রস্রাবপায়খানা করতে অস্বস্তি কমানোর উপায় কাটার কারণে প্রস্রাব পায়খানা করতে যেয়ে জ্বালাপোড়া অথবা ব্যথা হতে পারে এটি নিয়ন্ত্রণ করার জন্য আপনি যা যা করতে পারেন—স্বাস্থ্যসম্মত ও সুষম খাবার খাবেন যেসব খাবার খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার ঝুঁকি কমে সেগুলো নিয়মিত খাবেন এর মধ্যে রয়েছে ফলমূল শাকসবজি ও লাল চাল কিংবা লাল আটার মতো হোল গ্রেইন বা গোটা শস্যদানা বেশি বেশি খাবেন প্রতিদিন কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করবেন এতে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার ঝুঁকি কমবে যদি পায়খানা কষা হয় এবং পায়খানা করতে বেশি কষ্ট হয় সে ক্ষেত্রে ল্যাক্সেটিভ অর্থাৎ পায়খানা নরম করার ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন প্রস্রাব করার সময় যোনি ও এর চারপাশে কুসুম গরম পানি ঢালতে থাকুন এতে করে জ্বালাপোড়া কম হতে পারে পায়খানা করার সময় একটি পরিষ্কার প্যাড দিয়ে হালকা করে পেরিনিয়াম চেপে ধরে রাখতে পারেন এতে করে কাটা স্থানে কিছুটা কম চাপ পড়বে ৫ তলপেটের পেশির ব্যায়াম জন্মদানের পর যত দ্রুত পারবেন শুরু করে দিবেন এগুলো পেশিকে শক্তি ফিরে পেতে সাহায্য করে যার ফলে কাটা স্থানে কম চাপ পরেতলপেটের পেশির ব্যায়ামের জন্য আপনার যোনি ও পায়ুর চারপাশের পেশিতে চাপ সৃষ্টি করবেন যেন আপনি প্রস্রাব বা পায়খানা আটকানোর চেষ্টা করছেন ১০ থেকে ১৫ বার এমন করুন এই ব্যায়ামটিকে কেগেল ব্যায়াম বলা হয়প্রতিদিন এভাবে তলপেটের ব্যায়াম করতে থাকলে আপনার প্রস্রাবপায়খানা ধরে রাখার সমস্যা অথবা যৌন মিলনে সমস্যা কমে আসবেএ সম্পর্কে বিস্তারিত পড়ুন পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ সাধারণত এপিসিওটমি নিরাপদ একটি অপারেশন তবে কখনও কখনও মায়েরা কিছু জটিলতার মুখোমুখি হন১ ইনফেকশন যেহেতু এটি একটি কাটা অংশ তাই এখানে সহজেই ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি থাকে ইনফেকশন হলে যে লক্ষণগুলো দেখতে পাবেন—কাটার আশেপাশের ত্বক লাল লাল হয়ে যাবে এবং ফোলা ফোলা ভাব থাকবে সারাক্ষণই ব্যথা করবে কাটা জায়গায় দুর্গন্ধ হবে যা সাধারণত হয় না কাটা জায়গা থেকে পুঁজ বের হবে ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে ২ কাটা দাগের জটিলতা যেকোনো কাটা শুকানোর সাথে এই জটিলতা তৈরি হওয়ার একটি ক্ষীণ সম্ভাবনা থাকে কাটার তুলনায় শুকানোর পর এর দাগ অনেক বড় হতে পারে আবার কাটা দাগ ত্বকের চেয়ে উঁচু হয়ে থাকতে পারে অথবা দাগের ওপর চুলকানি হতে পারে ৩ যৌন মিলনের সময় ব্যথা পাওয়া এপিসিওটমির পর যৌন মিলনে ব্যথা হওয়াটা স্বাভাবিক এমনকি অনেক মা প্রসবের কয়েক মাস পর পর্যন্ত যৌন মিলনে ব্যথা বা অস্বস্তি বোধ করতে পারেন তবে সময়ের সাথে সাথে এটি ঠিক হয়ে যায় এই ক্ষেত্রে ধৈর্য বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ এলার্জি খুব সাধারণ একটা সমস্যা শিশুদের এলার্জি হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে তবে বয়স বাড়ার সাথে সাথে লক্ষণগুলো কমে যেতে পারে আবার অনেকের ছোটোবেলায় এলার্জির সমস্যা না থাকলেও পরবর্তীতে নতুন করে এলার্জি দেখা দিতে পারে কিছু বিধিনিষেধ মেনে চললে এলার্জি অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ক্ষতিকর জিনিস থেকে আমাদেরকে সুরক্ষা দেয় তবে কখনো কখনো কিছু জিনিসকে এটি ভুলে ক্ষতিকর ভেবে বসে যা আসলে ক্ষতিকর নয় এসব জিনিসের বিরুদ্ধে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার প্রতিক্রিয়ায় এলার্জির লক্ষণ দেখা দেয় যেমন চামড়া লাল হয়ে যাওয়া ও চুলকানিসাধারণত যেসব জিনিসের সংস্পর্শে আসলে শরীরে এলার্জি দেখা দেয় তার মধ্যে রয়েছে—নির্দিষ্ট কিছু খাবার ধুলাবালি গরম অথবা ঠান্ডা আবহাওয়া ঘাম গৃহপালিত পশুপাখি পরাগ রেণু ও ফুলের রেণু সূর্যরশ্মি ডাস্ট মাইট মোল্ড বা ছত্রাক বিভিন্ন ঔষধ কীটনাশক ডিটারজেন্ট ও বিভিন্ন রাসায়নিক পদার্থ ল্যাটেক্স বা বিশেষ ধরনের রাবারের তৈরি গ্লাভস ও কনডম স্ট্রেস বা মানসিক চাপ ইত্যাদি এলার্জি জাতীয় খাবারের তালিকাঃ সচরাচর যেসব খাবারে এলার্জি হতে দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে—চিংড়ি বেগুন ইলিশ মাছ গরুর মাংস বাদাম এ ছাড়া শিশুদের ক্ষেত্রে ডিম ও দুধেও এলার্জি হতে পারে একেকজন মানুষের একেক ধরনের জিনিস অথবা খাবারে এলার্জি থাকতে পারে তাই কোন ধরনের জিনিসের সংস্পর্শে আসলে অথবা খাবার খেলে এলার্জির লক্ষণ দেখা দিচ্ছে সেই বিষয়ে লক্ষ রাখা প্রয়োজন এটি খুঁজে বের করতে পারলে এলার্জি নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেক সহজ হয়ে যায় শরীর এলার্জিক উপাদানের সংস্পর্শে আসার পর খুব কম সময়ের মধ্যে এর প্রতিক্রিয়া দেখা যায় এলার্জির লক্ষণগুলো হলো—চামড়ায় চুলকানি র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি হওয়া শরীরের কিছু অংশ চাকা চাকা হয়ে যাওয়া বা ফুলে যাওয়া ফোস্কা পড়া ও চামড়া ঝরে যাওয়া ঠোঁট জিহ্বা চোখ ও মুখ ফুলে যাওয়া চোখে চুলকানি চোখ থেকে পানি পড়া লাল হওয়া ও ফুলে যাওয়া শুকনো কাশি হাঁচি নাকে ও গলায় চুলকানি ও নাক বন্ধ হওয়া শ্বাসকষ্ট বুকে চাপ চাপ লাগা ও শ্বাস নেওয়ার সময়ে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া বমি বমি ভাব বমি পেট ব্যথা পেট কামড়ানো ও ডায়রিয়া নিচের তিনটি ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ—ঔষধ খাওয়ার পরেও লক্ষণ দূর না হলে ডাক্তারের দেওয়া ঔষধ খাওয়ার পর নতুন লক্ষণ দেখা দিলে কিংবা সমস্যা আরও বেড়ে গেলে মারাত্মক এলার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দিলে এলার্জিক উপাদানের প্রতি তীব্র প্রতিক্রিয়া থেকে খুব অল্প কিছু ক্ষেত্রে অ্যানাফিল্যাক্সিস নামক একটি জরুরি অবস্থা তৈরি হতে পারে এ অবস্থায় দ্রুত পদক্ষেপ না নিলে রোগীর মৃত্যু হতে পারে এমন রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব নিকটস্থ হাসপাতালে নিতে হবে সময়মতো একটি ইনজেকশন দিলেই রোগীর জীবন বাঁচানো সম্ভব অ্যানাফিল্যাক্সিস হচ্ছে কি না যেভাবে বুঝবেন— শ্বাসকষ্ট অথবা শ্বাস নেওয়ার সময়ে শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া বুকগলা আঁটসাঁট হয়ে আসছে বা আটকে আসছে বলে মনে হওয়া মুখ ঠোঁট জিহ্বা অথবা গলা ফুলে যাওয়া ঠোঁট ও ত্বক নীল হয়ে যাওয়া জ্ঞান হারানোর মতো অনুভূতি হওয়া অথবা পুরোপুরি অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বিভ্রান্তি ও দুশ্চিন্তা মাথা ঘুরানো অথবা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা বুক ধড়ফড় করা কিংবা শরীর ঘামে ভিজে যাওয়া চামড়ায় চুলকানিসহ লাল লাল ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ হওয়া অথবা চামড়া ফুলে ওঠা শরীরের কিছু জায়গা থেকে চামড়া উঠে আসা কিংবা ফোস্কা পড়া এলার্জি আছে এমন খাবার ও ঔষধ ডাক্তারি পরীক্ষানিরীক্ষায় ব্যবহৃত কন্ট্রাস্ট বা ডাই অথবা পোকামাকড়ের কামড় থেকে অ্যানাফিল্যাক্সিস হতে পারে খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় কিছু বিধিনিষেধ মেনে চললে এলার্জি অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভবঘরোয়া প্রতিকার ও জীবনযাত্রা যেসব খাবার ও ঔষধে এলার্জি হয় সেগুলো এড়িয়ে চলবেন হাঁপানি অথবা শ্বাসনালীর অন্য কোনো রোগ থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী চলবেন স্ট্রেস বা মানসিক চাপ মোকাবেলায় শারীরিক ব্যায়াম যোগব্যায়াম ও শ্বাসের ব্যায়াম করা যেতে পারে এলার্জির চিকিৎসায় প্রধানত অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করা হয় এগুলো এলার্জির লক্ষণ দেখা দেওয়ার সাথে সাথে—এমনকি লক্ষণ দেখা দেওয়ার পূর্বেও সেবন করা যায় যেমন কারও যদি ধুলাবালিতে এলার্জি থাকে এবং বিশেষ প্রয়োজনে তার ধুলাবালি পরিষ্কার করতে হয় সেক্ষেত্রে আগেই অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ সেবন করা যায় এসব ঔষধ বিভিন্ন রূপে পাওয়া যায় যেমন ট্যাবলেট সিরাপ ও ড্রপ উল্লেখ্য এলার্জির কিছু ঔষধ সেবনের পরে ঘুম ঘুম লাগা ও মাথা ঝিম ঝিম করার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হতে পারে তাই ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে আপনার জন্য উপযুক্ত ঔষধটি বেছে নিন নাক বন্ধের সমস্যায় ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নাক বন্ধের ড্রপ ও স্প্রে ব্যবহার করা যেতে পারে তবে এই ড্রপ ও স্প্রেগুলো এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ব্যবহার করবেন না দীর্ঘ সময় ব্যবহারে এলার্জির লক্ষণ আবার ফিরে আসতে পারে ত্বকের এলার্জিতে বিভিন্ন ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম ও মলম ব্যবহার করা যেতে পারে চুলকানির সমস্যায় ক্যালামাইন লোশন ও ১ মেন্থল ক্রিম খুব ভালো কাজ করে এ ছাড়াও তোয়ালে তে বরফ পেঁচিয়ে চুলকানির স্থানে ঠান্ডা সেঁক দিলে আরাম পাওয়া যায় গুরুতর এলার্জিতে স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ ভালো কাজ করে স্টেরয়েড খুবই শক্তিশালী ঔষধ পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াও বেশি তাই ইন্টারনেট দেখে কিংবা ফার্মেসি থেকে নিজে নিজে এসব ঔষধ কিনে খাওয়া একেবারেই উচিত নয় কেবল ডাক্তারের পরামর্শক্রমেই নিয়ম মেনে এই ধরনের ঔষধ সেবন করা উচিত ইমিউনোথেরাপিগুরুত্বর এলার্জির জন্য ইমিউনোথেরাপি একটি কার্যকরী চিকিৎসা এই চিকিৎসায় রোগীকে দীর্ঘদিন ধরে নির্দিষ্ট অ্যালার্জেনের উপস্থিতিতে অভ্যস্ত করে তোলা হয় এর ফলে পরবর্তীতে আক্রান্ত ব্যক্তির শরীরে সেই অ্যালার্জেনের প্রতি পূর্বের মতো তীব্র প্রতিক্রিয়া হয় না ফলে লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা অনেকটাই সহজ হয়ে আসে ওপরে আলোচিত মারাত্মক এলার্জিক প্রতিক্রিয়া বা অ্যানাফিল্যাক্সিস হলে আক্রান্ত ব্যক্তিকে দ্রুত নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে অ্যানাফিল্যাক্সিস এর লক্ষণ দেখা দিলে রোগীর ঊরুর বাইরের দিকে তাৎক্ষণিক একটি ইনজেকশন দিতে হয় এই ইনজেকশনে অ্যাড্রেনালিন নামক জীবন রক্ষাকারী একটা হরমোন থাকে এটি মৃত্যুঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এলার্জি থেকে মুক্ত থাকার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো যেসব বস্তুতে এলার্জি রয়েছে সেগুলো এড়িয়ে চলা এলার্জি প্রতিরোধে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন—এলার্জি ঘটায় এমন খাবারগুলো এড়িয়ে চলুন গৃহপালিত পশুপাখির বাসস্থান বাড়ির বাইরে তৈরি করুন এবং তাদের নিয়মিত পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখুন ডাস্ট মাইট নামক এক প্রকার অতিক্ষুদ্র পোকা থেকে এলার্জি প্রতিরোধ করতে বাড়ির যে জায়গাগুলোতে বেশি সময় কাটানো হয় সেগুলো ধুলামুক্ত ও পরিষ্কার রাখুন বিছানার চাদর কাঁথা বালিশ ও লেপের কভার জানালার পর্দা—এগুলো সপ্তাহে অন্তত একবার গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন যেসব জিনিস নিয়মিত ধোয়া যায় না সেগুলো বাসায় যত কম ব্যবহার করা যায় ততই ভালো যেমন কার্পেট এ ছাড়া বিছানা গোছানো ও ঝাড়ামোছা করার সময়ে ভালো একটা মাস্ক পড়ুন যেসব জিনিস ভেজা কাপড় দিয়ে মোছা যায় সেগুলো ভেজা কাপড় দিয়ে মুছুন এতে ধুলা ছড়াবে নাডাস্ট মাইট এক ধরনের ছোটো ছোটো পোকা এগুলো খালি চোখে দেখা যায় না মাইক্রোস্কোপের নিচে দেখলে সাদা রঙের আট পাওয়ালা পোকার মতো দেখা যায় আমাদের চামড়া থেকে যে মৃত কোষগুলো প্রতিদিন বিছানায় কার্পেটে কিংবা সোফায় ঝরে পরে এরা সেগুলো খেয়ে বেঁচে থাকে দেয়ালে ছত্রাক বা মোল্ডছত্রাক বা মোল্ড থেকে সুরক্ষার জন্য বাড়ির পরিবেশ শুষ্ক রাখুন পাশাপাশি বাতাস চলাচলের ভালো ব্যবস্থা রাখুন ঘরের ভেতর কাপড় শুকানো থেকে বিরত থাকুন এবং গাছ থাকলে সেটি সরিয়ে ফেলুন গরম বা ঘাম থেকে এলার্জি হতে পারে তাই খুব পরিশ্রম করার পর শরীর গরম হলে বা ঘেমে গেলে বাতাস চলাচল করছে এমন স্থানে থাকুন এবং ঢিলেঢালা কাপড় পরুন ঠান্ডা থেকেও এলার্জির সমস্যা হতে পারে এমন হলে বৃষ্টিতে ভেজা ও পুকুরে গোসল করা থেকে বিরত থাকুন গোসলের সময়ে কুসুম গরম পানি ব্যবহার করা যেতে পারেনির্দিষ্ট কিছু ধাতুতে কারোর এলার্জি থাকতে পারে এসব ধাতুর তৈরি আংটি গয়না ও ঘড়ি পরলে এলার্জি হতে পারে নির্দিষ্ট কোনো ধাতুতে আপনার এলার্জি থাকলে দৈনন্দিন জীবনে সেই ধাতুর তৈরি জিনিস ব্যবহার এড়িয়ে চলুন ফুলের পরাগ রেণু হতে এলার্জি প্রতিরোধের জন্য ঋতু পরিবর্তনের সময়ে যতটা সম্ভব ঘরের ভেতরে থাকুন বাইরে গেলেও ঘরে ফিরে কাপড় পাল্টে গোসল করে ফেলুন যেন পরাগ রেণু ধুয়ে চলে যায় সম্ভব হলে ঘরের ভেতরে জামাকাপড় শুকোতে দিন তবে ছত্রাক যেন না জন্মে যায় সেই বিষয়েও খেয়াল রাখবেন এ ছাড়া যে স্থানে ঘাসের পরিমাণ বেশি সেখানে হাঁটাচলা করা থেকে বিরত থাকুন বিভিন্ন প্রসাধনীতে থাকা কেমিক্যালে এলার্জি থাকতে পারে যেমন সাবান শ্যাম্পু ফেইসওয়াশ ও সুগন্ধিতে থাকা কেমিক্যাল যেসব পণ্যে এলার্জি হয় সেগুলো ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুনবিশেষ তথ্য এলার্জি প্রতিরোধে ছোটো শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানোর অনেক সুফল রয়েছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ছয় মাস বয়স পর্যন্ত শিশুকে কেবল বুকের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেয় কিছু গবেষণায় দেখা গেছে জন্মের পর অন্তত প্রথম চার মাস শিশুকে কোনো শক্ত খাবার না দিয়ে কেবল বুকের দুধ খাওয়ালে সেটি এলার্জি প্রতিরোধে কার্যকর হতে পারে এলার্জির কারণ খুঁজে বের করার জন্য আক্রান্ত ব্যক্তিকে চিকিৎসক বিভিন্ন প্রশ্ন ও শারীরিক পরীক্ষা করেন তা ছাড়া অন্য কোনো রোগের কারণে এলার্জির মতো লক্ষণ দেখা দিচ্ছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখেন এলার্জি শনাক্ত করার গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষাগুলো হলো—খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন যেসব খাবারে সাধারণত এলার্জি হয় সেগুলো খাদ্যাভ্যাস থেকে বাদ দিয়ে দেখা হয় যে এলার্জি নিয়ন্ত্রণে আসে কি না পরবর্তীতে আবার খাবারগুলো খেতে শুরু করলে এলার্জি ফিরে আসে কি না তাও দেখার চেষ্টা করা হয় সাধারণত রোগীর কোন ধরনের খাবার খাওয়ায় এলার্জির লক্ষণ দেখা দেয় সেটি একটি ডায়েরিতে লিখে রাখার পরামর্শ দেওয়া হয় এতে করে কোন কোন খাবারে রোগীর এলার্জি হয় তা নির্ণয় করা সম্ভব হয়ত্বকের পরীক্ষা যেসব পদার্থে এলার্জি হয় সেসবকে অ্যালার্জেন বলে ত্বকের পরীক্ষাতে অ্যালার্জেন যুক্ত অল্প একটু তরল বাহুর ওপরে দেওয়া হয় এরপর সুঁই দিয়ে সেই জায়গায় সামান্য একটু ছিদ্র করা হয় এলার্জি থাকলে ১৫ মিনিটের মধ্যে ঐ স্থানটি চুলকাতে শুরু করে এবং লাল হয়ে যায় উল্লেখ্য পরীক্ষার আগে অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ সেবন করলে সঠিক ফলাফল পাওয়া যায় নারক্তের পরীক্ষা এই পরীক্ষাতে রক্তের নমুনা নিয়ে নির্দিষ্ট অ্যালার্জেন এর বিপক্ষে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়েছে কি না সেটি পরীক্ষা করে দেখা হয়প্যাচ পরীক্ষা এই পরীক্ষাতে শরীরে কন্টাক্ট ডার্মাটাইটিস নামক এক ধরনের একজিমা বা এলার্জিজনিত চর্মরোগের উপস্থিতি পরীক্ষা করে দেখা হয় চ্যালেঞ্জ পরীক্ষা এই পরীক্ষাটি অল্প কিছু ক্ষেত্রে করা হয়ে থাকে এমন জায়গায় পরীক্ষাটি করতে হয় যেখানে গুরুতর এলার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা গেলে জরুরি চিকিৎসা করানো সম্ভব এই পরীক্ষায় নির্দিষ্ট কোনো খাবারে এলার্জি থাকলে সেই খাবারটি রোগীকে খাওয়ানোর মাধ্যমে এলার্জির প্রতিক্রিয়া দেখা হয় খাবারের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ানোর মাধ্যমে এলার্জিক প্রতিক্রিয়া বেড়ে যাচ্ছে কি না সেটিও দেখা হয়বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ এলার্জি পরীক্ষায় এলার্জি কিট এর ব্যবহার নির্ভরযোগ্য নয় তাই এই কিটের মাধ্যমে পরীক্ষা এড়িয়ে চলাই ভালো অনেক সময় সেন্সিটিভিটি ও অসহনীয়তা বা ইনটলারেন্স এর সমস্যাকে প্রাথমিকভাবে এলার্জির সমস্যা মনে হতে পারে এলার্জি সেন্সিটিভিটি ও অসহনীয়তার পার্থক্য জানা থাকলে চিকিৎসায় ত্রুটি এড়ানো সহজ হবেএলার্জি সাধারণত ক্ষতি করে না এমন উপাদান শরীরে প্রবেশের পর প্রতিরোধ ব্যবস্থা থেকে তৈরি প্রতিক্রিয়ার নামই এলার্জি যেমন নাকে ধুলাবালি প্রবেশ করলে হাঁচিকাশি হওয়া সেন্সিটিভিটি কোনো উপাদান কারোর শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি প্রভাব ফেললে তাকে সেই উপাদানের প্রতি সেন্সিটিভিটি বলা হয়ে থাকে যেমন এক কাপ কফিতে থাকা ক্যাফেইন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কাজ করলে বুক ধড়ফড় করতে পারে এবং শরীরে কাঁপুনি দেখা দিতে পারে অসহনীয়তা কোনো উপাদানের প্রভাবে শরীরে অস্বস্তিকর লক্ষণ দেখা দেওয়ার ঘটনাকে ইনটলারেন্স বা অসহনীয়তা বলা হয় যেমন দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার পরে ডায়রিয়া হওয়া উল্লেখ্য এই ধরনের প্রতিক্রিয়ার সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার সম্পর্ক থাকে না এলার্জিক রাইনাইটিসে নাক বন্ধ হওয়া নাক দিয়ে পানি পড়া হাঁচি ও চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা দেয় এলার্জিজনিত কারণে নাকের ভেতরে প্রদাহ হয়ে এই লক্ষণগুলো সৃষ্টি হয়এলার্জিক রাইনাইটিসে নাক বন্ধ হওয়া নাক দিয়ে পানি পড়া হাঁচি ও চুলকানির মতো লক্ষণ দেখা দেয় এলার্জিজনিত কারণে নাকের ভেতরে প্রদাহ হয়ে এই লক্ষণগুলো সৃষ্টি হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই সমস্যার চিকিৎসায় মূল লক্ষ্য হলো এসব লক্ষণ থেকে মুক্তি পাওয়া লক্ষণ তেমন মারাত্মক না হলে আপনি সাধারণত নিজে নিজেই সেগুলোর চিকিৎসা করতে পারবেন তবে ঘরোয়া চিকিৎসায় কাজ না হলে কিংবা লক্ষণগুলো আরও বেড়ে গিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা সৃষ্টি করলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয় এলার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণগুলো অনেকাংশেই সাধারণ সর্দিকাশির মতো লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—হাঁচি হওয়া নাকের ভেতর চুলকানি অনুভূত হওয়া নাক থেকে পানি পড়া নাক বন্ধ হয়ে যাওয়া অথবা সর্দি হওয়া সাধারণত এলার্জি আছে এমন কোনো জিনিসের সংস্পর্শে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই এসব লক্ষণ দেখা দিতে শুরু করে বেশিরভাগ রোগীদেরই লক্ষণসমূহ মৃদু হয়ে থাকে এবং কার্যকর চিকিৎসায় তা সহজেই সেরে যায় তবে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে লক্ষণসমূহ তীব্র হতে পারে এবং কয়েক বছর স্থায়ী হতে পারে যা স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে কষ্টদায়ক করে দেয় এবং নানান সমস্যা তৈরি করে যেমন ঘুমের সমস্যা হওয়া ব্যক্তি বিশেষে লক্ষণ দেখা দেওয়ার সময়কাল ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে যেমন কারও কারও নির্দিষ্ট ঋতুতে এলার্জিক রাইনাইটিস দেখা দেয় কারণ তাদের ঋতুভিত্তিক গাছ ও ঘাসের পরাগে এলার্জি থাকে এবং ঋতু পরিবর্তনের সাথে লক্ষণগুলোও দূর হয়ে যায় আবার অন্যরা প্রায় সারা বছরই ভোগান্তিতে থাকেন এলার্জিক রাইনাইটিস এর মূলে রয়েছে বিভিন্ন জিনিসের প্রতি এলার্জি এলার্জির প্রতিক্রিয়ায় আমাদের দেহে হিস্টামিন নামক একটি রাসায়নিক পদার্থ বের হয়ে আসেহিস্টামিন নাকের ভেতরের চামড়ায় প্রদাহ সৃষ্টি করে তখন নাকের ভেতরে প্রচুর পরিমাণে শ্লেষ্মা জাতীয় পিচ্ছিল তরল পদার্থ তৈরি হয় এরপর হাঁচি এবং নাক থেকে পানি পড়াসহ এলার্জিক রাইনাইটিসের বিভিন্ন লক্ষণ প্রকাশ পায়একেকজন মানুষের একেক জিনিসে এলার্জি হয় পরিবারে কেউ এলার্জিতে ভুগলে জেনেটিক কারণে অন্যান্য সদস্যের এলার্জি হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় সচরাচর যেসব জিনিসে এলার্জি হতে দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে—ডাস্ট মাইট পরাগ রেণু গৃহপালিত পশুপাখি ছত্রাক কর্মক্ষেত্রের পরিবেশে থাকা নানান এলার্জিক উপাদান যেমন— কাঠের গুঁড়া আটা ও ময়দার গুঁড়া ল্যাটেক্স বা বিশেষ ধরনের রাবারের গ্লাভস উল্লেখ্য কিছু পরিবেশগত কারণেও এলার্জি হতে পারে গবেষণায় দেখা গেছে পরিবারের সদস্যদের ধূমপানের অভ্যাস থাকলে কিংবা বাড়িতে ডাস্ট মাইট থাকলে সেখানে বেড়ে ওঠা শিশুদের এলার্জির ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে ডাস্ট মাইট এক ধরনের ছোটো ছোটো পোকা এগুলো খালি চোখে দেখা যায় না মাইক্রোস্কোপের নিচে দেখলে সাদা রঙের আট পাওয়ালা পোকার মতো দেখা যায় আমাদের চামড়া থেকে যে মৃত কোষগুলো প্রতিদিন বিছানায় কার্পেটে কিংবা সোফায় ঝরে পরে ডাস্ট মাইট সেগুলো খেয়ে বেঁচে থাকে এলার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণগুলো মৃদু হলে ঘরোয়াভাবেই তার চিকিৎসা করা যায় এক্ষেত্রে চিকিৎসার লক্ষ্য হলো নাক বন্ধ নাক দিয়ে পানি পড়া ও হাঁচি—এসব লক্ষণগুলো উপশম করা এলার্জিক রাইনাইটিস এর ঘরোয়া চিকিৎসা এলার্জিক রাইনাইটিস উপশমে ঘরোয়া পদ্ধতিগুলো হলো—এলার্জি উদ্রেককারী জিনিসগুলো এড়িয়ে চলা নিচের প্রতিরোধ অংশে এই ব্যাপারে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে যেসব ঔষধ খেলে ঘুম ঘুম ভাব আসে না এমন অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ খাওয়া যেমন সেটিরিজিন ও লোরাটাডিন এগুলো দেহে এলার্জির প্রতিক্রিয়ায় বের হওয়া হিস্টামিন এর বিরুদ্ধে কাজ করে উল্লেখ্য একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের অ্যান্টিহিস্টামিন ঔষধ ভালো কাজ করে তাই আপনার জন্য সবচেয়ে কার্যকর ঔষধটি খুঁজে পাওয়ার আগে কয়েক ধরনের অ্যান্টিহিস্টামিন ব্যবহার করে দেখার প্রয়োজন হতে পারেস্যালাইন বা ০৯ সোডিয়াম ক্লোরাইড সমৃদ্ধ নাকের ড্রপ দিয়ে নাক পরিষ্কার করা ফার্মেসিতে এগুলো সলো স্যালোরাইড ইডি এনসল ও হ্যাপিসলসহ বিভিন্ন নামে পাওয়া যায় এগুলো নাকে থাকা এলার্জি উদ্রেককারী জিনিসগুলো পরিষ্কার করতে সাহায্য করেযে তিনটি ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে— ঘরোয়া চিকিৎসায় কাজ না হলে লক্ষণগুলো তীব্র হলে গুরুতর লক্ষণের কারণে স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা সৃষ্টি হলে যেমন ঘুমের সমস্যা হওয়া দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটাএলার্জিক রাইনাইটিস এর ঔষধঔষধের মাধ্যমে এলার্জিক রাইনাইটিসের সাধারণ লক্ষণগুলো উপশম করা যায় তবে এলার্জি পুরোপুরি সারিয়ে তোলা যায় নাঋতু পরিবর্তনের সময় এলার্জির সমস্যা দেখা দিলে নির্দিষ্ট সময়ের জন্য ঔষধ সেবন করতে পারেন লক্ষণ দূর হয়ে গেলে আর ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন নেই এলার্জিক রাইনাইটিসের কার্যকর ঔষধগুলোর মধ্যে রয়েছে—অ্যান্টিহিস্টামিনঅ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ ট্যাবলেট স্প্রে ড্রপ সিরাপ ও ক্রিম হিসেবে ফার্মেসিতে কিনতে পাওয়া যায়অ্যান্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট কেনার জন্য সাধারণত ডাক্তারের প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন হয় না তবে কিডনি অথবা লিভারের সমস্যা থাকলে অথবা খিঁচুনি রোগীদের ক্ষেত্রে কিংবা ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে এসব ঔষধ ব্যবহারের পূর্বে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেউল্লেখ্য কিছু অ্যান্টিহিস্টামিন ঔষধ সেবনে ঘুম ঘুম ভাব হওয়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তাই গাড়ি ড্রাইভিং ও মেশিন চালনার কাজ করার পূর্বে ঔষধ সেবন করা উচিত নয় ঝুঁকি এড়াতে রাতে ঘুমানোর পূর্বে ঔষধ খানঅ্যান্টিহিস্টামিন ঔষধ নাকের স্প্রে হিসেবে ট্যাবলেট কিংবা সিরাপের চেয়ে দ্রুত কাজ শুরু করে এগুলো এলার্জিক রাইনাইটিসের চিকিৎসায় তুলনামূলক অধিক কার্যকর তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এসব স্প্রে ব্যবহার করা ঠিক নয়স্টেরয়েডএলার্জিক রাইনাইটিসের চিকিৎসায় কিছু ক্ষেত্রে কর্টিকোস্টেরয়েড বা স্টেরয়েডযুক্ত নাকের ড্রপ কিংবা স্প্রে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় যেমন—কিছুদিন পর পরই লক্ষণ দেখা দিলে লক্ষণগুলো লম্বা সময় ধরে স্থায়ী হলে নাক বন্ধ থাকলে অথবা নাকে পলিপ হলেঘরোয়া চিকিৎসা ও অ্যান্টিহিস্টামিন ব্যবহার করেও লক্ষণের কোনো উন্নতি না হলেএই জাতীয় ঔষধ নাকের ভেতরের প্রদাহ কমিয়ে লক্ষণ উপশমে সাহায্য করে অ্যান্টিহিস্টামিনের তুলনায় এগুলো কাজ করতে বেশি সময় নিলেও এসবের প্রভাব থাকে দীর্ঘদিন বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে গুরুতর লক্ষণের চিকিৎসায় ডাক্তার ৫–১০ দিনের জন্য স্টেরয়েড ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনস্টেরয়েড ন্যাজাল স্প্রে ও ড্রপ ব্যবহারকারীদের মধ্যে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার ঘটনা বিরল তবে কিছু ক্ষেত্রে নাক শুষ্ক হওয়া নাকের ভেতরে জ্বালাপোড়া অথবা রক্ত পড়ার মতো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যঃ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া স্টেরয়েড ট্যাবলেট সেবন করা একেবারেই উচিত নয় বেশিদিন ধরে কিংবা উচ্চ ডোজে স্টেরয়েড সেবন করলে বিভিন্ন পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে তাই ইন্টারনেট দেখে কিংবা ফার্মেসি থেকে নিজে নিজে এসব ঔষধ কিনে খাবেন নাউল্লেখ্য ওপরের চিকিৎসাগুলোয় কাজ না হলে ডাক্তার স্টেরয়েড স্প্রে বা ড্রপের ডোজ বাড়িয়ে দিতে পারেন এ ছাড়া রোগীকে ভিন্ন ঔষধ ব্যবহার কিংবা একাধিক প্রকারের ঔষধ একত্রে ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হতে পারেইমিউনোথেরাপিএই চিকিৎসায় রোগীকে একটি লম্বা সময় ধরে এলার্জিক উপাদানের সাথে অভ্যস্ত করে তোলা হয় এতে শরীরে আগের মতো এলার্জিক প্রতিক্রিয়া দেখা দেয় না এই পদ্ধতিতে মারাত্মক এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই চিকিৎসাটি বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে করা হয়ে থাকেইমিউনোথেরাপির ব্যবহার সীমিত গুটিকয়েক নির্দিষ্ট প্রকারের এলার্জি গুরুতর রূপ ধারণ করলে কেবল তখনই এই চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহৃত হয় যেমন পরাগ রেণুতে এলার্জি বা হে ফিভার বাংলাদেশে এই চিকিৎসা পদ্ধতিটি তেমন প্রচলিত নয় এলার্জিক রাইনাইটিস প্রতিরোধের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো এলার্জি উদ্রেক করে বা করতে পারে এমন জিনিস এড়িয়ে চলা এলার্জি উদ্রেককারী জিনিসগুলো পুরোপুরি এড়িয়ে চলা কঠিন হতে পারে যেমন বাড়িতে ডাস্ট মাইট আছে কি না সেই বিষয়ে নিশ্চিত হওয়া কঠিন হতে পারে কারণ বেশ পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন বাসাবাড়িতেও এগুলো বংশবিস্তার করতে পারে আবার নিজের কিংবা কোনো নিকটাত্মীয়ের বাড়িতে পোষা প্রাণী থাকলে সেগুলোর সংস্পর্শ এড়িয়ে চলাটাও কঠিন হওয়া স্বাভাবিক তবে এলার্জি উদ্রেককারী জিনিসের সংস্পর্শ যথাসম্ভব কমিয়ে আনার জন্য বেশ কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যায় এগুলো এলার্জিক রাইনাইটিসের লক্ষণ উপশমে বেশ কার্যকর হবে কমন এলার্জিক উপাদানগুলো এড়িয়ে চলার কিছু কার্যকর পরামর্শ নিচে তুলে ধরা হয়েছে—ডাস্ট মাইটডাস্ট মাইট নামের ছোটো ছোটো পোকা এলার্জি উদ্রেকের সবচেয়ে বড় কারণগুলোর মধ্যে একটি এরা বাসায় থাকা ধুলাবালিতে বংশবিস্তার করে আকারে খুব ছোটো হওয়ায় এগুলোকে খালি চোখে দেখা যায় না তাই শনাক্ত করা বেশ কঠিনডাস্ট মাইট থেকে এলার্জি প্রতিরোধে নিচের উপদেশগুলো মেনে চলুন—বিছানার চাদর কাঁথা পর্দা ছোটো বাচ্চাদের নরম খেলনা বালিশ ও লেপের কভার—এগুলো সপ্তাহে অন্তত একবার গরম পানি দিয়ে ধুয়ে নিন বাড়িতে ব্যবহৃত যেসব জিনিস সহজে ধোয়া যায় না সেগুলো বাসায় যত কম ব্যবহার করা যায় ততই ভালো যেমন কার্পেট ও উলের কম্বল কার্পেটের পরিবর্তে শক্ত ভিনাইল এর ফ্লোরম্যাট ব্যবহার করতে পারেন কম্বলের ক্ষেত্রে সহজে ধুয়ে দেওয়া যায় এমন সিনথেটিক কাপড়ের কাভার ব্যবহার করা যেতে পারে বাড়ির যে জায়গাগুলোতে বেশি সময় কাটানো হয় সেগুলো সবসময় ধুলামুক্ত ও পরিষ্কার রাখুন যেমন বসার ও শোবার ঘর বিছানা গোছানো ও ঝাড়ামোছা করার সময়ে ভালো একটা মাস্ক পড়ুন যেসব জিনিস ভেজা কাপড় দিয়ে মোছা যায় সেগুলো ভেজা কাপড় দিয়েই মুছুন যেমন বাড়ির মেঝে ও আসবাবপত্র এতে ধুলোবালি বাতাসে কম উড়বে ছড়িয়ে যাবে না কেউ কেউ বাড়িতে ভ্যাকুয়াম ক্লিনার ব্যবহার করেন সেক্ষেত্রে সম্ভব হলে হেপা ফিল্টার যুক্ত ক্লিনার ব্যবহার করতে পারেন এগুলো ধুলাবালি দূর করতে অধিক কার্যকরপোষা প্রাণীঅনেকেই মনে করেন যে পশুপাখির পালক অথবা পশমেই এলার্জিক প্রতিক্রিয়া হয় এটি একটি ভুল ধারণা মূলত পশুপাখির শরীর থেকে ঝরে পড়া মৃত কোষ মুখের লালা ও শুষ্ক প্রস্রাবের কণা এলার্জি উদ্রেক করেএলার্জিক রাইনাইটিসের সমস্যা থাকলে পোষা প্রাণী এড়িয়ে চলাই ভালো সেটি সম্ভব না হলে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলতে পারেন—পোষা প্রাণীকে যথাসম্ভব বাড়ির বাইরে রাখার চেষ্টা করুন বাইরে লালনপালন করা সম্ভব না হলে বাড়িতে একটি আলাদা ঘরে তাদের থাকার ব্যবস্থা করুন এবং সেখানে কার্পেটের ব্যবহার এড়িয়ে চলুন শোবার ঘরে পোষা প্রাণীকে প্রবেশ করতে দিবেন না পোষা প্রাণীকে প্রতি দুই সপ্তাহে অন্তত একবার গোসল করান পোষা কুকুরকে নিয়মিত বাড়ির বাইরে নিয়ে পশম আঁচড়ানো ব্রাশ করানোসহ ত্বকের সার্বিক যত্ন নিন পশুপাখির ব্যবহৃত বিছানা নরম কুশন ও ব্যবহার্য জিনিসপত্র নিয়মিত ধুয়ে দিননিজের বাড়িতে পোষা প্রাণী নেই কিন্তু যেই বন্ধু অথবা আত্মীয়ের বাসায় যাচ্ছেন তাদের পোষা প্রাণী আছে—এমন ক্ষেত্রে তাদের বাড়িতে ঢোকার এক ঘণ্টা আগে অ্যান্টিহিস্টামিন খেয়ে নিনপরাগ রেণু বা পোলেনছবি ফুলের পরাগ রেণু একেক ধরনের গাছপালার পরাগায়ন বছরের একেক সময়ে হয় তাই বছরের কোন সময়ে এলার্জিক রাইনাইটিসের প্রকোপ বাড়বে সেটি কোন ধরনের পরাগে এলার্জি আছে তার ওপরে নির্ভর করবে তবে বসন্ত ও গ্রীষ্মকালে বাতাসে পরাগ রেণুর পরিমাণ বেড়ে যায় বলে সাধারণত এ সময়েই বেশিরভাগ মানুষকে এলার্জিক রাইনাইটিসে আক্রান্ত হতে দেখা যায়পরাগ রেণুর মাধ্যমে এলার্জিক রাইনাইটিস প্রতিরোধে নিচের উপদেশগুলো কার্যকর হতে পারে—ঋতু পরিবর্তনের সময়ে বিশেষ করে গ্রীষ্ম ও বসন্তকালে যতটা সম্ভব ঘরের ভেতরে থাকুন মাঝসকালে এবং সন্ধ্যার আগে আগে ঘরের দরজাজানালা বন্ধ রাখুন এই সময়ে বাতাসে পরাগরেণুর সংখ্যা সবচেয়ে বেশি থাকে বাতাসে পরাগ রেণুর পরিমাণ বাড়লে জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ির বাইরে যাওয়া এড়িয়ে চলুন একান্তই বাইরে যেতে হলে বাড়িতে ফেরার পর গোসল করে নিন যেসব জামাকাপড় পরে বাইরে গিয়েছিলেন সেগুলো ধুয়ে ফেলুন সম্ভব হলে জামাকাপড় ঘরের ভেতরে শুকোতে দিন তবে বাড়িতে যেন ছত্রাক না জন্মায় সে ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে যে স্থানে ঘাসের পরিমাণ বেশি সেখানে হাঁটাচলা করা থেকে বিরত থাকুনমোল্ড বা ছত্রাকছবি দেয়ালে ছত্রাক বা মোল্ডউষ্ণ ও স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশ এধরনের এলার্জির উপদ্রব বাড়িয়ে দিতে পারে এটি প্রতিরোধে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন—বাড়ির পরিবেশকে শুষ্ক রাখার পাশাপাশি আলোবাতাস চলাচলের ভালো ব্যবস্থা রাখুন বাড়ির ভেতরের স্যাঁতস্যাঁতে ও আর্দ্র স্থানগুলো মেরামত করুন গোসল ও রান্নার সময়ে জানালা খুলে দিন তবে এসময়ে রান্নাঘর ও বাথরুমের দরজা বন্ধ রাখুন যেন বাষ্প বাড়ির ভেতর না ছড়ায় তাছাড়া বাষ্প বাড়ির বাইরে বের করে দিতে এক্সস্ট ফ্যান ব্যবহার করুন বাড়ির ভেতরে ভেজা কাপড় শুকোতে দেওয়া থেকে বিরত থাকুন স্যাঁতস্যাঁতে স্থানে কাপড় রাখা ও আলমারিতে নির্দিষ্ট স্থানে অনেক কাপড় আঁটসাঁট করে রাখা এড়িয়ে চলুন ঘরে গাছ থাকলে সেটি সরিয়ে ফেলুন এলার্জিক রাইনাইটিস আছে কি না সেটি নিশ্চিত হতে ডাক্তার রোগীকে বিভিন্ন প্রশ্ন করে থাকেন যেমন—নির্দিষ্ট কোনো এলার্জিক উপাদানের প্রভাবে লক্ষণ প্রকাশ পাচ্ছে কি না লক্ষণগুলো কোনো নির্দিষ্ট স্থানে অথবা সময়ে দেখা দেয় কি না পরিবারের কেউ এমন সমস্যায় ভুগছেন কি না এসবের পাশাপাশি ডাক্তার নাকে পলিপ আছে কি না সেটিও খতিয়ে দেখতে পারেন পলিপকে অনেকে নাকের ভেতরে মাংস বেড়ে যাওয়ার সমস্যা হিসেবে চিনে থাকেন এলার্জিক রাইনাইটিসে নাকের ভেতরের প্রদাহ হওয়ার কারণে নাকে পলিপ হতে পারে অ্যান্টিহিস্টামিন ব্যবহারে রোগীর লক্ষণ উপশম হলে প্রায় নিশ্চিতভাবে বলা যায় যে হাঁচি নাক দিয়ে পানি পড়া ও সর্দির মতো লক্ষণগুলো এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার কারণেই ঘটেছে তবে এলার্জিক রাইনাইটিসের প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে ডাক্তার কিছু বিশেষ এলার্জি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন এলার্জিক রাইনাইটিস থেকে কিছু জটিলতা তৈরি হতে পারে নাক দিয়ে পানি পড়া ও নাক বন্ধের সমস্যা থেকে আরও কিছু সমস্যা হতে পারে যেমন—ঘুমের সমস্যা বা নিদ্রাহীনতা দিনের বেলাতেও ঘুম ঘুম লাগা মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকা কাজে মনোযোগ দিতে সমস্যা হওয়া উল্লেখ্যযোগ্য রোগী এলার্জিক রাইনাইটিসের পাশাপাশি হাঁপানিতে ভুগলে হাঁপানির লক্ষণগুলো খারাপের দিকে যেতে পারে কানে ব্যথা খুব কমন একটা সমস্যা শিশুদের সমস্যাটি বেশি হয়ে থাকে সাময়িকভাবে যন্ত্রনাদায়ক হলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণ নয় সময়মত সঠিক চিকিৎসা নিলে কানে ব্যথা থেকে প্রতিকার পাওয়া যায় নানান কারণে কানে ব্যথা হতে পারে বিভিন্ন কারণে ব্যথার স্থায়িত্ব বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে নিচে কানে ব্যথার খুব পরিচিত কিছু ধরন ও সেসবের সম্ভাব্য কারণগুলোর একটা তালিকা দেওয়া হলো—কানে ব্যথার সাথে সম্ভাব্য কারণঃ দাঁতে ব্যথা অনুভুত হওয়া – শিশুদের দাঁত ওঠা – দাঁত ও দাঁতের মাড়িতে ইনফেকশনের জন্য ফোঁড়া হওয়া শুনতে সমস্যা হওয়া – গ্লু ইয়ার বা কানে পানি জমা – কানে খইল বা ময়লা তৈরি হওয়া – কানের ভেতরে কিছু আটকে যাওয়া যেমন শিশু কোনো খেলনা বাদাম অথবা মটরশুঁটি কানে ঢুকিয়ে ফেললে যদি তা আটকে যায় – কানের পর্দা ছিদ্র হওয়া খাবার গিলার সময় ব্যথা অনুভুত হওয়া – গলা ব্যথা – টনসিলের ইনফেকশন – টনসিলের বিভিন্ন জটিলতা যেমন টনসিলের চারপাশে গুরুতর ইনফেকশন থেকে ফোঁড়া হওয়া জ্বর আসা – কানের ইনফেকশন – কানের ভিতর কিছু আটকে গেলে তা নিজে নিজে বের করার চেষ্টা না করে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান কানের ব্যথা কমাতে নিচে উল্লেখিত বিষয়গুলো মেনে চলুন—নরম কাপড় দিয়ে উষ্ণ অথবা ঠাণ্ডা সেক দিতে পারেনপ্যারাসিটামল অথবা আইবুপ্রোফেন জাতীয় ব্যথানাশক ঔষধ খেতে পারেন উল্লেখ্য যাদের বয়স ১৬ বছরের কম তাদের অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ সেবন করা উচিৎ নয় ব্যথা প্রতিকারে যা করবেন না—কানে কিছু প্রবেশ করাবেন না যেমন কটন বাড জাতীয় বস্তু ইয়ার ওয়াক্স বা কানের ময়লা বের করার চেষ্টা করবেন না কানে পানি প্রবেশ করতে দেবেন না যখন জরুরিভাবে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেনকানে ব্যথার সাথে সাথে যে সমস্যাগুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন— ৩ দিনের বেশি সময় কানে ব্যথা থাকলে বার বার কান ব্যথা হলে ব্যথা বেড়ে গেলে এবং অবস্থার অবনতি হলে অনেক জ্বর আসলে অথবা গা গরম লাগলে এবং কাঁপুনি হলে কান ও কানের চারপাশ ফুলে গেলে কান থেকে পানি কিংবা তরল পদার্থ বের হতে থাকলে কানে শুনতে সমস্যা হলে অথবা শুনতে না পেলে কানে কিছু আটকে গেলে শিশুর বয়স ২ বছরের চেয়ে কম হলে এবং একইসাথে দুই কানে ব্যথা থাকলে শিশু ও ছোটো বাচ্চাদের এক কানে অথবা একই সাথে দুই কানে ব্যথা হতে পারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ইনফেকশনের জন্য ব্যথা হয়—যা অল্প কিছুদিনেই সেরে যায় শিশুর কানে ব্যথা হচ্ছে কি না তা বোঝার কিছু উপায় হলো— বাচ্চারা কান ঘষলে বা টানলে আওয়াজে সাড়া না দিলে শরীরের তাপমাত্রা ১০০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে খিটখিটে কিংবা খুব অস্থির হয়ে উঠলে খাবার খেতে না চাইলে শরীরের ভারসাম্য বা ব্যালেন্স হারিয়ে ফেললে কানের খইল জমলে সেটিকে আমরা কানের ময়লাও বলে থাকি এটিকে ইংরেজিতে ইয়ার ওয়াক্স বলা হয় এটি একটি স্বাভাবিক বিষয়সাধারণভাবে ময়লা ভাবা হলেও কানের খইল আমাদের জন্য উপকারি এটি কানের ভেতরের পরিবেশকে জীবাণু থেকে সুরক্ষা দেয় এটি সাধারণত নিজ থেকেই নিয়মিতভাবে বেরিয়ে আসেযদি কানে বেশি পরিমাণে খইল জমা হয় এবং শক্ত হয়ে আটকে থাকে তাহলে কানে নানান সমস্যা দেখা দেয় তখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয়কানে খইল আটকে থাকলে যে লক্ষণগুলো দেখা দেয় তা হলো—কানে শুনতে না পাওয়া কানে ব্যথা হওয়া এবং কান বন্ধ হয়ে আছে বলে মনে হওয়া বাইরে কোনো শব্দ না হলেও কানের ভেতর গুঞ্জন হচ্ছে বলে মনে হওয়া মাথা ঘুরানো শরীরের ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা বমি বমি লাগাগুরুত্বপূর্ণ তথ্য আঙুল ও অন্য কোনো বস্তু (যেমন কটন বাড) দিয়ে কখনোই কানের ময়লা বের করার চেষ্টা করবেন না কারণ এতে ময়লা উল্টো কানের ভেতরে ঢুকে যায় ফলে খইলের সমস্যা আরও বেড়ে যায় এবং ভোগান্তি পোহাতে হয় আমাদের অনেকেরই এই অভ্যাস আছে তাই এখন থেকে এই কাজটি একেবারেই বন্ধ করে দিতে হবেকানের খইল বা ময়লা বের করতে হলে মেডিকেল গ্রেড অলিভ ওয়েল ব্যবহার করবেন এই তেল তুলনামূলক বেশি কার্যকর এবং কানের ময়লা সহজে নরম করে ফলে সেটি আপনাআপনি কান থেকে বেরিয়ে আসেকানে তেল ব্যবহারের নিয়মকানের ময়লা নিজ থেকেই বের হয়ে পড়ে যায় কিন্তু যদি তা কানে আটকে থাকে এবং কান বন্ধ করে রাখে তাহলে দিনে তিন বার অথবা চার বার কানে দুই থেকে তিন ফোঁটা মেডিকেল গ্রেড অলিভ ওয়েল অথবা অ্যামন্ড ওয়েল দিন টানা তিন থেকে পাঁচ দিন এই পদ্ধতি অনুসরণ করুনকানে তেল দেওয়ার সুবিধার্থে ড্রপার ব্যবহার করুন তেল যেন সহজে কানের নালিতে প্রবেশ করে তাই কিছুক্ষণের জন্য মাথা এক পাশে কাত করে রাখুন সকালে ঘুম থেকে উঠে ও রাতের ঘুমানোর আগে কানে তেল দিলে পদ্ধতিটি মেনে চলা সহজতর হবে এর ফলে দুই সপ্তাহের মধ্যে ময়লা দলা হয়ে কান থেকে বেরিয়ে আসবেজরুরি তথ্যঃ কানের পর্দায় ছিদ্র থাকলে ড্রপ ও তেল ব্যবহার করবেন নাযখন ডাক্তারের কাছে যাবেনঘরোয়া পদ্ধতিতে সমস্যার সমাধান না হলে একজন নাককানগলা বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেবেন গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা হওয়ার ঘটনা খুব সাধারণ বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে এই ধরনের ব্যথা বেশী হয়ে থাকে লিগামেন্ট হলো সুতার মতো কিছু টিস্যু শরীরের বিভিন্ন হাড় ও জয়েন্ট (গিরা) লিগামেন্ট এর মাধ্যমে একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকে গর্ভাবস্থায় শরীরকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত করতে প্রাকৃতিকভাবেই এসব লিগামেন্ট নরম ও ঢিলেঢালা হয়ে যায় ফলে কোমর ও কোমরের নীচের অংশের হাড়গুলোর ওপরে অতিরিক্ত চাপ পড়ে একারণে গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা হতে পারে এখানে কোমর ব্যথা কমানোর ৯টি টিপস তুলে ধরা হয়েছে— মেঝে থেকে কিছু তুলতে হলে আগে হাঁটু ভাঁজ করে নিন পিঠ সোজা রেখে এরপর জিনিসটি তুলুন সামনে ঝুঁকে মেঝে থেকে কোনো কিছু তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে ভারী জিনিস ওঠানামা করা থেকে বিরত থাকুন কোনোদিকে ঘুরতে হলে খেয়াল রাখুন যেন মেরুদণ্ড বা শিরদাঁড়ার হাড় সোজা থাকে ও মোচড় না খায় শরীরের কেবল ওপরের অংশটি না বাঁকিয়ে পুরো শরীর ঘুরিয়ে ফেলুন শরীরের ওজন দুই পায়ে সমানভাবে বণ্টন করার জন্য হিল জুতা না পরে ফ্ল্যাট বা সমতল জুতা পরুন কেনাকাটা করার সময়ে হাতে ব্যাগ বহন করতে হলে এমনভাবে বহন করুন যেন দুই হাতের ব্যাগের ওজনের মধ্যে ভারসাম্য থাকে ঘরে অথবা অফিসে বসে কাজ করার সময়ে পিঠ সোজা রাখুন গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য বিশেষ বালিশ (ম্যাটারনিটি সাপোর্ট পিলো) ব্যবহার করতে পারেন৭ পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষের কয়েক মাস যথেষ্ট বিশ্রামের বিষয়টি নিশ্চিত করুন কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুন এ ছাড়া শরীর ম্যাসাজ বা হালকাভাবে মালিশ করতে পারেন এমন জাজিম তোষক ও ম্যাট্রেস ব্যবহার করুন যা সঠিকভাবে শরীরের ভার বহন করতে পাররে প্রয়োজনে নরম জাজিমের নিচে একটি হার্ডবোর্ড রেখে সেটি কিছুটা শক্ত করার ব্যবস্থা করতে পারেনডাক্তারের নিষেধাজ্ঞা না থাকলে এই কোমর ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন সবসময় ঔষধের সাথে থাকা কাগজে যে নির্দেশনা লেখা আছে সেটি পড়ে নিতে হবে এখানে চারটি ধাপে একটি হালকা ব্যায়ামের পদ্ধতি তুলে ধরা হয়েছে এই ব্যায়ামটি পেটের পেশিগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে এভাবে এই ব্যায়াম গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে ধাপ ১ঃ চার হাতপায়ে ভর দিয়ে এমন একটি অবস্থান গ্রহণ করুন যেন— হাঁটু কোমর বরাবর থাকেহাতের তালু কাঁধ বরাবর থাকেআঙুলগুলো সামনের দিকে থাকেপেটের পেশি টানটান অবস্থায় থাকেপিঠ সোজা ও মেঝের সমান্তরালে থাকে ধাপ ২ঃ এবার ছবি ২ এর মতো করে—পেটের পেশি ভেতরের দিকে টেনে নিন এবং পিঠ ওপরের দিকে উঁচু করুন মাথা ও কোমর ধীরে ধীরে নিচের দিকে নামান কনুই নমনীয় রাখুন কনুই একেবারে সোজা ও শক্ত করে ফেলা যাবে না পিঠ কোনো কষ্ট ছাড়া স্বাভাবিকভাবে যতটুকু উঁচু করা যায় ঠিক ততটুকুই উঁচু করবেন ধাপ ৩ঃ কয়েক সেকেন্ড এ অবস্থানেই থাকুন এরপর ছবি ৩ এর মতো করে—ধীরে ধীরে আগের মতো অর্থাৎ ছবি ১ এর মতো অবস্থানে ফিরে আসুন পিঠকে আগের মতো সোজা ও মেঝের সমান্তরালে নিয়ে আসুন পিঠ যেন বাঁকা না হয়ে যায় অর্থাৎ নিচের দিকে ঝুঁকে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখুন ধাপ ৪ধীরে ধীরে ও নিয়মিতভাবে মোট ১০ বার ধাপ ১ থেকে ধাপ ৩ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করুন পিঠ ওঠানামা করার সময়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকুন কোমর ব্যথা অনেক বেড়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডাক্তার আপনাকে ফিজিওথেরাপিস্টের কাছে পাঠাতে পারেন ফিজিওথেরাপিস্ট ব্যথা কমানোর বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম দেখিয়ে দিতে পারবেনকোমর ব্যথার সাথে নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে—যেকোনো এক পা কিংবা উভয় পায়ে পায়খানার রাস্তার চারিদিকে অথবা যোনিপথে অবশ লাগা অর্থাৎ বোধ হারিয়ে ফেলা জ্বর আসা মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্ত যাওয়া ও প্রস্রাব করার সময়ে ব্যথা হওয়া বুকের পাঁজরের যেকোনো একপাশে কিংবা উভয় পাশেই ব্যথা হওয়া পায়খানা কষা বা শক্ত হওয়াকেই মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয় এটি খুব পরিচিত একটি স্বাস্থ্য সমস্যা অনেকেরই মাঝে মাঝে পায়খানা খুব শক্ত হয়ে যায় মলত্যাগের সময় অনেকক্ষণ কসরত করতে হয় এ ছাড়া পায়খানার পর মনে হয় পেট ঠিকমতো পরিষ্কার হয়নিপায়খানা কষা বা শক্ত হওয়াকেই মূলত কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয় এটি খুব পরিচিত একটি স্বাস্থ্য সমস্যা অনেকেরই মাঝে মাঝে পায়খানা খুব শক্ত হয়ে যায় মলত্যাগের সময় অনেকক্ষণ কসরত করতে হয় এ ছাড়া পায়খানার পর মনে হয় পেট ঠিকমতো পরিষ্কার হয়নিকোষ্ঠকাঠিন্য হলে পায়খানা শক্ত হয় যার কারণে অনেকে মলত্যাগের সময় ব্যথা অনুভব করেন কারও কারও ক্ষেত্রে একটানা তিন–চারদিন পায়খানা নাও হতে পারে এগুলো সবই সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ দীর্ঘদিন কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পাইলস বা অর্শ রোগ কিংবা এনাল ফিসার বা গেজ রোগ এর মতো পায়ুপথের রোগ তৈরি হতে পারে পায়খানা কষা কেন হয় তা জেনে কিছু সাধারণ নিয়ম মেনে চললে কোনো প্রকার ঔষধ ছাড়াই সম্পূর্ণ ঘরোয়া উপায়েই এই সমস্যা এড়িয়ে চলা সম্ভব সাধারণত সপ্তাহে যদি তিন বারের কম পায়খানা হয় তবে সেটাকে কোষ্ঠকাঠিন্য বলা হয় এ ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্য হলে যেসব লক্ষণ থাকতে পারে সেগুলো হলো— পায়খানা শুকনো শক্ত চাকার মত হওয়াপায়খানার আকৃতি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হওয়া পায়খানা করতে কষ্ট হওয়া পেট পরিষ্কার হচ্ছে না এমন মনে হওয়া পেটে ব্যথা হওয়া পেট ফাঁপা লাগা বা বমি বমি ভাব হওয়া নানাবিধ কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে এগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কমন ও গুরুত্বপূর্ণ ৬টি কারণ হলো খাবারের তালিকায় যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ না থাকা পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করা শুয়েবসে থাকা ও শারীরিক পরিশ্রমের অভাবপায়খানার বেগ আসলে তা চেপে রাখা মানসিক চাপ উদ্বেগ বা বিষণ্ণতা ঔষধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াএই কারণগুলো কিভাবে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সৃষ্টি করে তা জানা গুরুত্বপূর্ণ এর মাধ্যমে এগুলো সমাধান করা সহজ হবে যথেষ্ট ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার না খাওয়াফাইবার বা আঁশ হলো এক ধরনের শর্করা পেট পরিষ্কার হওয়ার জন্য ফাইবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের পরিপাকতন্ত্রের যে জায়গায় পায়খানা তৈরি হয় ও জমা থাকে সেখানে ফাইবার অনেকটা স্পঞ্জের মত কাজ করেপানি শোষণ ও ধারণ করার মাধ্যমে ফাইবার পায়খানায় পানি ধরে রাখতে সাহায্য করে ফলে পায়খানা নরম ও ভারী হয় সহজেই শরীর থেকে বের হয়ে আসে কিন্তু খাবারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার না থাকলে পায়খানা শক্ত হয়ে যায় ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করাপানি খাবারের ফাইবারের সাথে মিলে পায়খানাকে ভারী ও নরম করে এর ফলে পরিপাকতন্ত্রের ভেতর দিয়ে পায়খানা চলাচল সহজ হয় তাই পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে শুয়েবসে থাকা ও শারীরিক পরিশ্রমের অভাবনিয়মিত ব্যায়াম ও শারীরিক পরিশ্রম করলে আমাদের পরিপাকতন্ত্র অর্থাৎ পেটের ভেতরে থাকা নাড়িভুঁড়ি সচল হয় এতে স্বাভাবিকভাবে পায়খানা বেরিয়ে আসে নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব হলে তাই কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে পায়খানার বেগ আসলে তা চেপে রাখা পায়খানা শক্ত হলে অনেকে টয়লেটে যেতে চায় না কারণ তখন মলত্যাগ করতে কিছুটা কষ্ট হয় কিন্তু পায়খানার বেগ আসলে তা যদি আটকে রাখা হয় তাহলে শরীর ক্রমশ সেখান থেকে পানি শুষে নিতে থাকে পেটের ভেতর পায়খানা জমিয়ে রাখলে সেটা দিন দিন আরও শক্ত হতে থাকে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় মানসিক চাপ উদ্বেগ বা বিষণ্ণতা অনেক সময় মানসিক চাপ কোনো কিছু নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকা বা বিষণ্ণতায় ভোগার ফলে শরীরের স্বাভাবিক গতিপ্রকৃতির ছন্দপতন হয় শারীরবৃত্তীয় কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটে এতে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নির্দিষ্ট কিছু ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে এর মধ্যে রয়েছে —ট্রামাডল বা ওপিয়েট জাতীয় ব্যথার ঔষধ আইবুপ্রোফেন আয়রন ট্যাবলেটক্যালসিয়াম সাপ্লিমেন্ট কেমোথেরাপিতে ব্যবহৃত কিছু ঔষধ এছাড়া একসাথে পাঁচটার বেশি ঔষধ খেলেও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে যেসব কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে সেগুলো এড়িয়ে চলার মাধ্যমে সহজেই কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে পরিত্রাণ পাওয়া সম্ভব নিচে ঘরোয়া উপায়ে কিভাবে কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসা করা যায় তা তুলে ধরা হয়েছে১ খাবারের তালিকায় ফাইবারের পরিমাণ বাড়াতে হবেপর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ আছে এমন খাবার খেতে হবে সবুজ শাকসবজি ফলমূল ডাল লাল আটা ও লাল চালের মতো গোটা শস্যদানা বেশি করে খাওয়া উচিত কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে দৈনিক প্রায় ৩০ গ্রাম ফাইবার খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয়কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কীভাবে ফাইবার যোগ করবেন জেনে নিন আমাদের সহজ ৫টি টিপস— ভাত বা রুটি খাওয়ার ক্ষেত্রে লাল চাল ও লাল আটা ব্যবহার করতে পারেন এগুলোতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে প্রতিবেলার খাবারে ডাল রাখতে পারেন ডালে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার থাকে প্রতিবেলার খাবারে কয়েক ধরনের বা সম্ভব না হলে কমপক্ষে এক ধরনের সবজি রাখতে হবে যেসব ফল বা সবজি খোসাসহ খাওয়া যায় সেগুলো খোসা না ফেলে খাওয়ার চেষ্টা করুন কারণ খোসায় উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে টমেটো আপেল ও আলুর মতো খাবারগুলো খোসাসহ খেতে পারেন তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোমতো পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে যেকোনো ফল বা সবজি গোটা বা আস্ত খেলে ভালো ফাইবার পাওয়া যায় জুস বা ভর্তা বানিয়ে খেলে আঁশের পরিমাণ কমে যায়তবে খাবারের তালিকায় ফাইবারের পরিমাণ হুট করে বাড়ানো উচিত নয় কারণ হঠাৎ ডায়েটে ফাইবারের পরিমাণ বাড়িয়ে ফেললে বায়ুর সমস্যা হতে পারে এ ছাড়া পেট ফাঁপা তলপেটে তীব্র ব্যথাসহ নানা ধরনের জটিলতা দেখা দিতে পারেতাই খাদ্য তালিকায় ফাইবারের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে গতকাল যদি শুধু একটি ফল খেয়ে থাকেন তাহলে আজ দুটো খাওয়ার সিদ্ধান্ত নিন সাথে কিছু বাদাম খান রান্না করা সবজি খেতে না চাইলে ভাতের সাথে টমেটো শসা গাজর কেটে সালাদ খাওয়া শুরু করতে পারেনপড়ুন ফাইবার জাতীয় খাবার তালিকাকোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঔষধ ইসবগুলের ভুসি ইতোমধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিলে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি একটি চমৎকার ঘরোয়া ঔষধ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে ভুসি পানি শোষণ ও ধারণ করার মাধ্যমে পায়খানা নরম করে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় সাধারণত দিনে দুইবার ইসবগুলের ভুসি খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় তবে এটি খাবার নির্দিষ্ট কিছু নিয়ম আছে যা বেশিরভাগ মানুষেরই অজানা আমাদের কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি খাওয়া সম্পর্কিত আর্টিকেল থেকে বিস্তারিত জেনে নিন ভুসি খেলে সারাদিনে অন্তত দুই লিটার পানি পান করার বিষয়টি ভুলে যাওয়া যাবে না২ দিনে অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে হবেপানি পায়খানা নরম করে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর কর‍তে সহায়তা করে এ ছাড়া ফাইবারজাতীয় খাবার প্রচুর পানি শোষণ করে তাই ডায়েটে ফাইবার বাড়ানোর সাথে সাথে পানি পান করার পরিমাণও বাড়াতে হবে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার ও পানি খেলে সাধারণত কয়েকদিনের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয়ফাইবারের সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করা না হলে পেটের ভেতরে থাকা নাড়িভুঁড়ির মুখ আটকে যেতে পারে এমন অবস্থায় জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে যেতে হয় এই পরিস্থিতি এড়াতে দিনে কমপক্ষে ২ লিটার পানি পান করতে হবে৩ প্রতিদিন কিছুক্ষণ ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করতে হবেনিয়মিত শরীরচর্চা বা হালকা ব্যায়াম করতে হবে শরীর সচল রাখলে তা পায়খানা নরম রাখতে সাহায্য করে প্রতিদিন কিছু সময়ের জন্য ব্যায়াম করার চেষ্টা করুনআপনার বয়স যদি ১৯ থেকে ৬৪ এর মধ্যে হলে সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘণ্টা মাঝারি ধরনের ব্যায়াম যেমন দ্রুত হাঁটা বা সাইকেল চালানো উচিত যদি আরেকটু বেশি পরিশ্রমের ব্যায়াম করতে চান তাহলে দৌড়ানো ফুটবল খেলা দড়ি লাফ সাঁতার কাটা — এগুলো বেছে নিতে পারেন ভারী ব্যায়ামের ক্ষেত্রে সপ্তাহে অন্তত সোয়া ১ ঘণ্টা বা ৭৫ মিনিট ব্যায়াম করার চেষ্টা করতে হবেব্যায়ামের মধ্যে ভারী ব্যায়াম বা প্রতিদিন দৌড়ানো বেছে নিতে হবে তা নয় শরীরকে চলমান রাখতে হাঁটাচলা হালকা স্ট্রেচিং যোগব্যায়াম ইত্যাদির মধ্যে যেকোনোটাই বেছে নেওয়া যায় গবেষণায় দেখা গেছে কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে হাঁটাহাঁটি বা হালকা শরীরচর্চাও কার্যকরী ভূমিকা রাখেঅন্যকিছু করার সুযোগ না হলে প্রতিদিন অন্তত ১৫২০ মিনিট হাঁটার চেষ্টা করুন প্রয়োজনে অল্প অল্প করে শুরু করতে পারেন এক বেলা দিয়ে শুরু করুন এরপর সকালসন্ধ্যা দুই বেলা করে হাঁটুন প্রথমে সপ্তাহে তিন দিন এভাবে হেঁটে আস্তে আস্তে সেটা পাঁচ দিনে নিয়ে আসুন এরপর ধীরে ধীরে সময় বাড়াতে থাকুন এতে কিছুটা হলেও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা সম্ভব হবেআপনি যদি নিয়মিত দৌড়ানোর অভ্যাস ঘড়ে তুলতে চান সেক্ষেত্রে ৯ সপ্তাহে দৌড়ানোর অভ্যাস তৈরির গাইডলাইনটি ফলো করুন৪ পায়খানার বেগ আসলে তা চেপে রাখা যাবে নাপায়খানা চেপে রাখলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা গুরুতর হতে থাকে এর ফলে পাইলস ও এনাল ফিসার বা গেজ রোগ সহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই পায়খানার বেগ আসলে যত দ্রুত সম্ভব টয়লেটে চলে যেতে হবেযাদের কোষ্ঠকাঠিন্য আছে তাদের জন্য মলত্যাগের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো প্যান বা লো কমোডে বসা তাই সম্ভব হলে লো কমোড ব্যবহার করতে পারেনবাম প্যান বা লো কমোড | ডান হাই কমোডআর যদি হাই কমোড ব্যবহার করতে হয় সেক্ষেত্রে পায়ের নিচে ছোট টুল দিয়ে পা উঁচু করে বসতে পারেন যাতে হাঁটু দুটি কোমরের উপরে থাকে এতে মলত্যাগ সহজ হবে নিচে বোঝার সুবিধার জন্য আমরা একটি ছবি সংযুক্ত করে দিয়েছিহাই কমোড ব্যবহারের ক্ষেত্রে পায়ের নিচে ছোট টুল দিয়ে পা উঁচু করে বসতে পারেন৫ মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত করার ব্যবস্থা নিতে হবেমন ভালো হয় এমন প্রশান্তিমূলক কাজ করতে পারেন এটা হতে পারে কোথাও ঘুরতে যাওয়া গান শোনা প্রার্থনা করা বা আপনজনের সাথে সময় কাটানো যদি আপনি ডিপ্রেশন কিংবা উদ্বিগ্নতা (Anxiety) রোগে ভুগে থাকেন তাহলে সেই রোগের চিকিৎসা নিন আপনার মানসিক অবস্থার উন্নতির সাথে সাথে কোষ্ঠকাঠিন্যও আস্তে আস্তে সেরে উঠবে৬ ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার বিষয়ে সচেতন থাকতে হবেঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া এড়াতে নতুন ঔষধ শুরু করার পরে যদি মনে হয় কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বেড়ে গেছে তাহলে আপনার ডাক্তারকে জানান তিনি প্রয়োজনে ঔষধ বদলে দিতে পারেন বা কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসার জন্য অন্য আরেকটি ঔষধ যোগ করতে পারেন নিচের ৯টি অবস্থায় দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ঘরোয়া উপায়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমাধান না হলে দীর্ঘদিন যাবত নিয়মিত কোষ্ঠকাঠিন্য রোগে ভোগা বা পেট ফাঁপা লাগলে অনেকদিন কোষ্ঠকাঠিন্য থাকার পর ডায়রিয়া শুরু হলে পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া বা আলকাতরার মতো কালো পায়খানা হলে পায়খানার রাস্তায় ব্যথা হলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে পেট ব্যথা বা জ্বর আসলে সারাক্ষণ ক্লান্ত লাগলে কোনো কারণ বা চেষ্টা ছাড়াই ওজন অনেক কমে গেলে কিংবা শুকিয়ে গেলে রক্তশূন্যতায় ভুগলে অনেকদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য থাকলে ফিকাল ইম্প্যাকশান হতে পারে এর অর্থ আপনার মলদ্বারে পায়খানা জমা হয়ে আটকে থাকতে পারে ফিকাল ইম্প্যাকশান এর প্রধান লক্ষণ হচ্ছে অনেকদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্য থাকার পরে ডায়রিয়া হওয়াএমনটা হলে চিকিৎসার জন্য সাধারণত নিচের চারটি পদ্ধতি অবলম্বন করা হয় গর্ভাবস্থায় কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা খুবই কমন গর্ভধারণের আগে আপনি এই সমস্যায় না ভুগে থাকলেও গর্ভধারণের পর আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা শুরু হতে পারে আর আপনার আগে থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে গর্ভাবস্থায় তা বেড়েও যেতে পারেগর্ভাবস্থায় কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা খুবই কমন গর্ভধারণের আগে আপনি এই সমস্যায় না ভুগে থাকলেও গর্ভধারণের পর আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা শুরু হতে পারে আর আপনার আগে থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে গর্ভাবস্থায় তা বেড়েও যেতে পারেতবে গর্ভকালীন সময়ে সবাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন না গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য হলেও জীবনধারায় সহজ কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আপনি অনেকাংশেই কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধান করতে পারেন এতে আপনার গর্ভকালীন সময় কিছুটা হলেও সহজ হয়ে আসবে গর্ভধারণের একেবারে প্রথম দিকের সময় থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হতে পারে অনেকেরই পুরো গর্ভকালীন সময় জুড়েই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকতে পারে এমনকি সন্তান জন্ম দেওয়ার তিন মাস পর পর্যন্তও আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগতে পারেন একবার কষা পায়খানা হলেই আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে গিয়েছে এমনটা ভেবে দুশ্চিন্তা করবেন না সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য হলে এক সপ্তাহে তিনবারের কম পায়খানা হয় পায়খানা শুকনো ও শক্ত হয় পায়খানার দলার আকৃতি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয় পায়খানা করতে কষ্ট অথবা ব্যথা হয় পেট পরিষ্কার হচ্ছে না এমন মনে হয় পেট ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা অথবা বমি বমি ভাব হয়পড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথাএসব লক্ষণ থাকলে দ্রুত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নিতে হবে কেননা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে পাইলস অথবা গেজ রোগ হতে পারে গর্ভাবস্থায় শরীরে কিছু হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে গবেষণায় দেখা গেছে যে গর্ভকালীন সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে পরিপাক নালীতে খাবার তুলনামূলকভাবে বেশি সময় ধরে অবস্থান করে অর্থাৎ খাবার হজম হয়ে মল তৈরি হতে বেশি সময় লাগে যার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এ ছাড়াও গর্ভাবস্থার শেষের দিকে গর্ভের শিশু অনেকটা বড় হয়ে যাওয়ায় গর্ভবতী নারীদের জরায়ুও আকারে বেড়ে যায় এবং এটি পরিপাক নালীতে বাইরে থেকে চাপ দেয় ফলে গর্ভধারণের শেষের দিকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে তবে হরমোনজনিত কারণ ছাড়াও আরও যেসব কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে অথবা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়তে পারে সেগুলো হলো—পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশসমৃদ্ধ খাবার (যেমন ফল ও শাকসবজি) না খেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করলে সারাদিন শুয়েবসে থাকলে অথবা হাঁটাহাঁটি না করলে পায়খানার চাপ আসার পরেও সেটি আটকে রাখলে মানসিক চাপ আতঙ্ক ও ডিপ্রেশনে থাকলে কোনো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলেবিশেষ তথ্য গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট সেবন করা গুরুত্বপূর্ণ তবে কখনো কখনো আয়রন ট্যাবলেট খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে সেক্ষেত্রে যেই ঔষধটি খেলে কষা পায়খানা হয় সেটির পরিবর্তে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অন্য ধরনের আয়রন ট্যাবলেট খেতে হবে তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই আয়রন ট্যাবলেট সেবন করা বন্ধ করবেন না জীবনধারায় কিছু নিয়ম মেনে চললে সহজেই গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা সম্ভব এ ছাড়া আপনি ইতোমধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগতে থাকলে অথবা পায়খানা শক্ত হলে এসব পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করবেন এতে করে ঘরে বসেই আপনি এই সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারেনগর্ভাবস্থায় কষা পায়খানার ঘরোয়া চিকিৎসাকষা পায়খানা নিরাময়ের প্রথম ধাপ হলো আপনার খাওয়াদাওয়া ও শরীরচর্চার অভ্যাসে সহজ কিছু পরিবর্তন আনা এজন্য—প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ফাইবার বা আঁশসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে যেমন ফলমূল শাকসবজি ডাল লাল চাল ও লাল আটার মতো গোটা শস্যদানা এগুলো পায়খানা নরম করতে এবং নিয়মিত পায়খানা করতে সাহায্য করে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন পায়খানা নরম করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ সাধারণত একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সারাদিনে কমপক্ষে দুই লিটার পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয় গর্ভাবস্থায় শরীর সচল রাখা চালিয়ে যেতে হবে দৈনিক কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে হাঁটাচলা দিয়েই শুরু করতে পারেন হাঁটাচলা খাবার থেকে মল তৈরি হয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে এভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধান করা যায়কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কীভাবে ফাইবার যোগ করবেন জেনে নিন আমাদের সহজ ৫টি টিপস— ভাত ও রুটি খাওয়ার ক্ষেত্রে সাদা চাল ও আটার পরিবর্তে লাল চাল ও লাল আটা ব্যবহার করতে পারেন এগুলোতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে প্রতিবেলার খাবারে ডাল রাখতে পারেন ডালে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার থাকে প্রতিবেলার খাবারে কয়েক ধরনের সবজি রাখার চেষ্টা করুন যেসব ফল অথবা সবজি খোসাসহ খাওয়া যায় সেগুলো খোসা না ফেলে খাওয়ার চেষ্টা করুন কারণ খোসায় উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে টমেটো আপেল ও আলুর মতো খাবারগুলো খোসাসহ খেতে পারেন তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোমতো পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে যেকোনো ফল বা সবজি গোটা বা আস্ত খেলে ভালো ফাইবার পাওয়া যায় জুস বা ভর্তা বানিয়ে খেলে আঁশের পরিমাণ কমে যায় খাবার তালিকায় ফাইবারের পরিমাণ হুট করে না বাড়িয়ে ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে সেই সাথে দৈনিক কমপক্ষে দুই লিটার করে পানি পান করতে হবেএসব ছাড়াও আরও কিছু পরামর্শ মেনে চলতে হবে—একসাথে অনেক বেশি খাবার না খেয়ে ছোটো ছোটো ভাগ করে বার বার খাবার খাবেন খাবার তালিকায় প্রক্রিয়াজাত খাবার (যেমন নুডুলস ও পাস্তা) সাদা চালের ভাত ও রুটি না রাখার চেষ্টা করবেন পায়খানার চাপ আসলে তা আটকে রাখবেন না প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে একটু সময় নিয়ে পায়খানা করার চেষ্টা করবেন পায়খানার সময় লো কমোড বা প্যান ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন হাই কমোড ব্যবহার করলে পায়ের নিচে ছোটো টুল বা পিঁড়ি দিয়ে পা একটু উঁচুতে রাখবেন সম্ভব হলে হাঁটু ভাঁজ করে কোমরের চেয়ে ওপরে রাখার চেষ্টা করবেনছবি হাই কমোড ব্যবহারের ক্ষেত্রে পায়ের নিচে ছোট টুল দিয়ে পা উঁচু করে বসতে পারেনমানসিক দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন থেকে নিজেকে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করবেনউপরের পরামর্শগুলোতে কাজ না হলে সঠিক নিয়ম মেনে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেনগর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঔষধঘরোয়া চিকিৎসায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঔষধ খেতে পারেন যেমন ল্যাকটুলোজ সিরাপ এই ঔষধটি গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ বলে ধরা হয়[৫]এসব ঔষধে কাজ না হলে ডাক্তার ঘরোয়া চিকিৎসার পাশাপাশি আরও শক্তিশালী ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনগর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন ঔষধ আপনার শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তাই এই সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যান্য ঔষধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন এ ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসার জন্য ক্যাস্টর অয়েল ও মিনারেল অয়েল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন[৬]আরও পড়ুনগর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার লাল চালের উপকারিতাগর্ভধারণের আগে থেকেই আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আরও সতর্ক থাকা দরকার এসব পদ্ধতি অবলম্বন করেও কোষ্ঠকাঠিন্য না কমলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ঔষধ খাবেন নাকখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে কিছু ক্ষেত্রে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেক বেড়ে যেতে পারে তখন দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি নাহলে কিছু মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরি— ঘরোয়া সমাধানে অবস্থার উন্নতি না হলে অনেক সময় ধরে পেট ফাঁপা হয়ে থাকলে পায়খানার সাথে রক্তপাত হলে অথবা কালো পায়খানা হলে পায়খানা করার সময়ে অনেক ব্যথা হলে পায়ুপথের মুখে কোনো ফোলা বা গোটার মতো কিছু সৃষ্টি হলে সারাক্ষণ ক্লান্তিতে ভুগলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে পেট ব্যথা ও জ্বর আসলে কোনো ঔষধ সেবনের কারণে কোষ্ঠিকাঠিন্যের সমস্যা হলে রক্তশূন্যতায় ভুগলে হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই ওজন অনেকটা কমে গেলে এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপে যাবেন যেকোনো স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে চিন্তিত হলে বিষয়টি আপনার ডাক্তার অথবা মিডয়াইফকে জানাবেন নির্দিষ্ট কিছু খাবারে হজমে সমস্যা হওয়া এবং সেগুলো খাওয়ার পর শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার ঘটনাকে খাদ্যে অসহনীয়তা বলা হয় নির্দিষ্ট কিছু খাবারে হজমে সমস্যা হওয়া এবং সেগুলো খাওয়ার পর শরীরে বিরূপ প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ার ঘটনাকে খাদ্যে অসহনীয়তা বলা হয় খাদ্যে অসহনীয়তার কারণে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন পেট ফাঁপা ভাব ও পেট ব্যথা এসব লক্ষণ সাধারণত খাবার খাওয়ার কয়েক ঘন্টা পরে দেখা দেয় খাদ্যে অসহনীয়তায় ভুগছেন এমন মনে করা মানুষের সংখ্যা বিগত বছরগুলোতে অনেকখানি বেড়ে গিয়েছে তবে কতজন মানুষ প্রকৃতপক্ষেই এই সমস্যায় ভুগছেন সেটি নির্ধারণ করা কঠিন অনেকেই খাদ্যে অসহনীয়তায় ভুগছেন বলে মনে করলেও দেখা যায় যে তাদের লক্ষণগুলোর পেছনে আসলে ভিন্ন কোনো কারণ দায়ী সাধারণত যেসব খাবারে রোগীর অসহনীয়তা রয়েছে সেগুলো খাওয়ার কয়েক ঘন্টা পর কিছু লক্ষণ দেখা দেয় তবে এই সাধারণ লক্ষণগুলো যে কেবল খাদ্যে অসহনীয়তার জন্যই নির্দিষ্ট—তা নয় বিভিন্ন ধরনের রোগেও এই জাতীয় লক্ষণগুলো দেখা যায়একারণে রোগীর সত্যিই কোনো খাবারে অসহনীয়তা আছে কি না সেটি নির্ধারণ করা কঠিন হয়ে পড়েনির্দিষ্ট কোনো খাবার সহ্য না হলে রোগীর মধ্যে সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়—হজম সংক্রান্ত সমস্যা পেট ব্যথা পেট ফাঁপা ভাব বায়ুর সমস্যা পাতলা পায়খানা অন্যান্য সমস্যা ত্বকে ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ দেখা দেওয়া চুলকানি হওয়া নিয়মিতভাবে নিচের চারটি লক্ষণ দেখা দিলে এবং লক্ষণগুলোর কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত না হতে পারলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডায়রিয়া পেট ফাঁপা ভাব পেট ব্যথা ত্বকে ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ হওয়াডাক্তার রোগীর সাথে কথা বলে লক্ষণগুলোর ভিত্তিতে রোগ নির্ণয় করবেন প্রয়োজনে তিনি রক্ত পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেনসাধারণত নিচের রোগগুলোর ক্ষেত্রে খাদ্যে অসহনীয়তার মতো লক্ষণ দেখা দেয়—ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম (Irritable Bowel Syndrome) মানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তা ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স সিলিয়াক ডিজিজ ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ বিভিন্ন খাবারে অ্যালার্জিপরিপাকতন্ত্র একটি স্পর্শকাতর অঙ্গ তাই অসুস্থ হলে অথবা মানসিক চাপের মধ্যে থাকলে প্রায়ই পেটের বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারেপড়ুন পেট সুস্থ রাখার ঘরোয়া উপায় খাদ্যে অসহনীয়তা ও খাদ্যে অ্যালার্জি দুটি ভিন্ন রোগ এই দুটি রোগকে কীভাবে একে অপরের থেকে আলাদা করা যায় সেটি নিচের ছকে তুলে ধরা হয়েছে—খাদ্যে অ্যালার্জি খাদ্যে অসহনীয়তা প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা বা ইমিউন সিস্টেমের সাথে সম্পর্ক খাদ্যে অ্যালার্জি শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার একটি প্রতিক্রিয়া শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা ভুলবশত কোনো কোনো খাদ্যের প্রোটিনকে শরীরের জন্য হুমকিস্বরুপ মনে করে সেসবের বিরুদ্ধে প্রতিক্রিয়া দেখায় যাকে আমরা অ্যালার্জি বলি খাদ্যে অসহনীয়তার সাথে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থার কোনো সংশ্লিষ্টতা নেই এতে কোনো অ্যালার্জিক রিঅ্যাকশন হয় না রোগের লক্ষণ ত্বকে র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি হওয়া ও চুলকানি মুখ ঠোঁট ও গলা ফুলে যাওয়া শ্বাসপ্রশ্বাসের সময়ে হাঁপানির মতো শোঁ শোঁ শব্দ হওয়া ত্বকে ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ দেখা দেওয়া ও চুলকানি পেট ব্যথা পেট ফাঁপা ভাব বায়ুর সমস্যা পাতলা পায়খানা লক্ষণ দেখা দেওয়ার সময় সাধারণত নির্দিষ্ট খাবার খাওয়ার পরপরই খুব দ্রুত লক্ষণগুলো দেখা দেয় সাধারণত যেসব খাবার খেলে অসুবিধা হয় সেগুলো খাওয়ার কয়েক ঘন্টা পর ধীরে ধীরে লক্ষণগুলো দেখা দেয় খাবারের পরিমাণ খুব সামান্য পরিমাণে খাবার খাওয়ার পরই রিঅ্যাকশন শুরু হয়ে যায় সাধারণত একটি নির্দিষ্ট পরিমাণের বেশি অর্থাৎ বেশ খানিকটা খাবার খাওয়ার পরে লক্ষণগুলো দেখা দেয় মৃত্যুঝুঁকি খাদ্যে অ্যালার্জি কখনো কখনো প্রাণঘাতী হতে পারে খাদ্যে অসহনীয়তা কখনও প্রাণঘাতী হয় না নির্দিষ্ট খাবারের উদাহরণ প্রাপ্তবয়স্কদের সাধারণত বিশেষ কিছু খাবারে অ্যালার্জি হয় যেমন চিংড়ি স্কুইড ও অন্যান্য শেলফিসসহ বিভিন্ন বাদাম শিশুদের ক্ষেত্রে সাধারণত নিচের খাবারগুলোতে অ্যালার্জি হয় দুধ ডিম মাছ চিনাবাদাম ও অন্যান্য বাদাম খাদ্যে অসহনীয়তার রোগীদের অনেক ধরনের খাবারে অসহনীয়তা থাকতে পারে যেমন— দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার গমের তৈরি খাবার এবং বিভিন্ন ধরনের অ্যাডিটিভ ও প্রিজারভেটিভ যুক্ত খাবার একজন মানুষ ঠিক কী কারণে নির্দিষ্ট কিছু খাবার সহ্য করতে পারে না সেটি সবসময় সহজে বোঝা যায় না কিছু কিছু ক্ষেত্রে খাবার ও লক্ষণের সম্পর্ক থেকে অসহনীয়তার কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়যেমন দুধ দই ও নরম পনিরে ল্যাকটোজ নামের এক ধরনের শর্করা থাকে অনেকের শরীর এই ল্যাকটোজ হজম করতে পারে নাতাই দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার খাওয়ার পরে অসহনীয়তার লক্ষণ দেখা দিলে রোগীর ল্যাকটোজ ইনটলারেন্স আছে বলে ধারণা করা হতে পারেএক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এই রোগের ব্যাপারে নিশ্চিত হয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবেআবার কিছু মানুষের গম অথবা গমের তৈরি খাবার হজমে সমস্যা হয় এক্ষেত্রে সাধারণত গমের তৈরি রুটি কিংবা পাউরুটি খাওয়ার পর পেট ফাঁপা ভাব পেট ব্যথা বায়ুর সমস্যা ডায়রিয়া ও বমি বমি ভাব— এমন নানান লক্ষণ দেখা দেয়এ ছাড়াও অনেকসময় খাবারে যোগ করা বিভিন্ন প্রিজারভেটিভ অ্যাডিটিভ ও অন্যান্য রাসায়নিক উপাদানের কারণে অসহনীয়তা হতে পারে এই ধরনের উপাদানের মধ্যে রয়েছে—টেস্টিং সল্ট বা এমএসজি (মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট) খাদ্যে ব্যবহৃত কৃত্রিম রং ফ্লেভার এসেন্স ও প্রিজারভেটিভ চিনির বিকল্প হিসেবে ব্যবহৃত কৃত্রিম সুইটনার যেমন জিরোক্যাল সুগার ফ্রি ইক্যুয়াল ও হাক্সল ক্যাফেইন অ্যালকোহল বিভিন্ন জীবাণু কিংবা সেগুলোর থেকে তৈরি বিষাক্ত পদার্থ—এগুলো খাবারকে দূষিত করে হিস্টামিন নামক একটি রাসায়নিক এটি মাশরুম প্রক্রিয়াজাত করা খাবার ও অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়তে থাকতে পারে নির্দিষ্ট কোনো খাবারে অসহনীয়তা আছে কি না সেটি নির্ণয়ের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো রোগীর লক্ষণ ও খাবারের অভ্যাস পর্যবেক্ষণ করানির্দিষ্ট কোনো খাবারের সাথে রোগীর লক্ষণের কোনো যোগসূত্র আছে কি না তা খুঁজে বের করাকোনো খাবার নিয়ে সন্দেহ থাকলে সেটি কিছুদিনের জন্য খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিয়ে ফলাফল কী হয় তা দেখুন এরপর ধীরে ধীরে খাবারটি আবার ডায়েটে যোগ করতে পারেন এ ছাড়া একটি ডায়েরিতে এসব তথ্য লিখে রাখতে পারেন খাবারের ডায়েরিডায়েরিতে নিচের ৬টি তথ্য লিখে রাখতে হবে কী ধরনের খাবার খাওয়া হচ্ছে সেসব খাবার খাওয়ার পরে কোনো লক্ষণ দেখা দিচ্ছে কি না কী ধরনের লক্ষণ দেখা দিচ্ছে লক্ষণগুলো কোন সময়ে দেখা দিচ্ছে খাবারটি বাদ দেওয়ার পরে লক্ষণের উন্নতি হচ্ছে কি না বাদ দেওয়া খাবারটি পুনরায় ডায়েটে যোগ করার পরে লক্ষণ ফিরে আসছে কি নাট্রায়াল এলিমিনেশন ডায়েটকোন কোন খাবার খাওয়ার কারণে শরীরে লক্ষণ দেখা দিচ্ছে সেই সম্পর্কে একটা ধারণা তৈরি হওয়ার পরে খাবারগুলো এক এক করে ডায়েট থেকে বাদ দেওয়া যেতে পারে এই পদ্ধতিকে ট্রায়াল এলিমিনেশন ডায়েট বলা হয় যেই খাবারটি সহ্য হয় না বলে ধারণা করা হচ্ছে সেটি খাবারের তালিকা থেকে ২ থেকে ৬ সপ্তাহের জন্য বাদ দিয়ে লক্ষণের কোনো উন্নতি হয় কি না সেটি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এরপর খাবারটি আবার ডায়েটে যোগ করে লক্ষণগুলো ফিরে আসে কি না সেটি দেখতে হবে এমনও হতে পারে যে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ পর্যন্ত খাবারটি খেলে কোনো সমস্যা হয় না কিন্তু সেই পরিমাণের চেয়ে বেশি খেয়ে ফেললেই লক্ষণগুলো দেখা দেয়এই পদ্ধতি চলাকালে শরীরে সব পুষ্টি উপাদানের প্রাপ্তি নিশ্চিত করতে একজন পুষ্টিবিদ বা ডায়েটিশিয়ান এর পরামর্শ নিন বিশেষ দ্রষ্টব্য শিশুদের ক্ষেত্রে ডাক্তার অথবা ডায়েটিশিয়ান এর পরামর্শ ছাড়া কখনও কোনো নির্দিষ্ট খাবার খাওয়ানো বন্ধ করবেন না কোনো নির্দিষ্ট খাবারে অসহনীয়তার ব্যাপারে নিশ্চিত হলে এটি নিয়ন্ত্রণের একমাত্র উপায় হলো কিছুদিনের জন্য সেই খাবার খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া এরপর একটু একটু করে খাবারটি আবারও ডায়েটে যোগ করতে হবেআবার লক্ষণ দেখা দেওয়ার আগ পর্যন্ত সর্বোচ্চ কতটুকু খাবার খাওয়া যায় সেটি পর্যবেক্ষণ করতে হবে এরপর খাবারটি পুনরায় খাদ্য তালিকায় যোগ করতে হবেকী ধরনের খাবার এড়িয়ে চলতে হবে সেটি বোঝার জন্য খাবারের প্যাকেটের লেবেল ভালোভাবে পড়ে দেখার অভ্যাস করতে হবেশিশুর খাদ্যে অসহনীয়তার সমস্যা আছে বলে ধারণা করলে শিশুর খাবারের তালিকা থেকে যেকোনো খাবার বাদ দেওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তার অথবা ডায়েটিশিয়ান এর পরামর্শ নিতে হবেযেমন অনেকে শিশুর খাবারের তালিকা থেকে গরুর দুধ বাদ দিয়ে ফেলেন গরুর দুধ ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি ও প্রোটিনের খুব ভালো উৎস তাই শিশুর শরীরে গরুর দুধ সহ্য না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে বিকল্প উপায়ে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান প্রাপ্তি নিশ্চিত করার পরেই কেবল তা শিশুর খাবারের তালিকা থেকে বাদ দেওয়া যেতে পারে আজকাল আপনার প্রায়ই নির্দিষ্ট কোনো খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা জেগে উঠতে পারে গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা খুবই কমনতবে সবারই এমন সমস্যা হয় না এ ধরনের সমস্যায় ভুগলে দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই এক্ষেত্রে আপনার খাওয়াদাওয়ার অভ্যাসের ছোটোখাটো কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন এভাবে আপনি অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা প্রতিরোধ করতে পারবেন গর্ভাবস্থায় সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো সময় থেকে কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা/আসক্তি শুরু হয় না একেকজনের ক্ষেত্রে একেক সময় ও একেক খাবারের প্রতি এই লক্ষণ দেখা দেয় আবার কারও কারও এধরনের কোনো লক্ষণই দেখা দেয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রথম ত্রৈমাসিকের মধ্যেই নির্দিষ্ট কোনো খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা শুরু হতে দেখা যায়এমনকি কারও কারও ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রথম পাঁচ সপ্তাহের মধ্যেই এই লক্ষণ দেখা দিতে পারেপরবর্তী তিন মাস অর্থাৎ গর্ভধারণের চতুর্থ পঞ্চম ও ষষ্ঠ মাসে ধীরে ধীরে এই লক্ষণের তীব্রতা বাড়তে থাকে তবে গর্ভধারণের শেষের ত্রৈমাসিকের মধ্যে অর্থাৎ সপ্তম অষ্টম ও নবম মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু খাওয়ার এমন তীব্র ইচ্ছা তেমন একটা থাকে না বললেই চলে গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়ার প্রতি তীব্র ইচ্ছা তৈরি হয় তার নির্দিষ্ট কোনো তালিকা নেই ভিন্ন ভিন্ন নারীর ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে এমন লক্ষণ দেখা দেয়অনেকের ভাজাপোড়া ও চিপসের মতো তেলচর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় অন্যদিকে আগে অপছন্দ ছিল এমন কিছু খাবার খাওয়ার প্রতিও কারও কারও তীব্র ইচ্ছা জন্মাতে পারে আপনারও কোনো খাবার খাওয়ার প্রতি তীব্র ইচ্ছা জন্মাতে পারে তাই এসব নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তার প্রয়োজন নেই গর্ভাবস্থায় পছন্দমতো খাবার খেতে কোনো সমস্যা নেই তবে কোনো খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয় সব ধরনের খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে পছন্দমতো খাবার খাওয়ার পাশাপাশি খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কেও খেয়াল রাখতে হবে শুধুমাত্র একই ধরনের খাবার অথবা কম পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া যাবে না এতে মা ও গর্ভের শিশুর অপুষ্টিতে ভোগার সম্ভাবনা থাকে তা ছাড়া প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাওয়ায় ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে মা ও শিশুর নানান স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারে পিকা যদি খুবই অদ্ভুত কিছু—যা খাবার নয়—এমন কিছু খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হয় (যেমন মাটি কাগজ কিংবা দেয়ালের রঙ) তাহলে সেটি পিকা নামের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা হলে এমনটি হয় তাই এমন কিছু বোধ করলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে গর্ভাবস্থায় যেকোনো স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে ইচ্ছা হলে তা খেয়ে নিতে পারেন এতে কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই তবে দিনশেষে যেন অতিরিক্ত খাবার খাওয়া না হয়ে যায় সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবেঅন্যদিকে প্রক্রিয়াজাত বা প্রসেসড খাবার তেলচর্বিযুক্ত খাবার ভাজাপোড়া ও চিনিযুক্ত খাবার যতটা এড়িয়ে চলা যায় ততই ভালো কেননা এসব খাবার মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে এ ছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে কিছু খাবার (যেমন কলিজা) খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হলেও সেসব খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবেপড়ুন গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে নাএক্ষেত্রে যেসব পরামর্শ মেনে চলতে পারেন পুষ্টিমান জেনে খাবার খান কোনো খাবার খেতে তীব্র ইচ্ছা হলে তা খাওয়ার আগে খাবারের পুষ্টিমান সম্পর্কে চিন্তা করুন অপুষ্টিকর ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকুনকোনো অপুষ্টিকর খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হলে এর বিকল্প অথবা কাছাকাছি স্বাদগন্ধের অন্য কোনো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন প্রতিবারে অল্প অল্প করে খাবার খান অনেকসময় কম পুষ্টিসম্পন্ন ও তেলচর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হতে পারে এক্ষেত্রে একবারে অনেকখানি খাবার না খেয়ে অল্প পরিমাণে কয়েক বারে ভাগ করে খেতে পারেন এতে করে অতিরিক্ত অপুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারবেন বারবার খাওয়ার ইচ্ছা হলে মন অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করুন একই খাবার বারবার খেতে ইচ্ছা করলে মন অন্য দিকে সরানোর চেষ্টা করতে পারেন এজন্য হালকা ব্যায়াম করা হাঁটাহাঁটি করা কিংবা গল্প করার মতো কোনো কিছুতে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেনপড়ুন গর্ভবতীর খাবার তালিকা গর্ভাবস্থায় কোনো খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হওয়ার জন্য দায়ী নির্দিষ্ট কোনো কারণ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি তবে ধারণা করা হয় যে গর্ভাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তনের কারণে রুচির এমন পরিবর্তন ঘটে গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত পুষ্টির চাহিদা থাকার কারণেও এমনটা হতে পারেকোন ধরনের খাবারের প্রতি তীব্র ইচ্ছা জন্মাবে তার ওপরে পারিপার্শ্বিক ও সংস্কৃতির একটা প্রভাব আছে বলে কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে এ ছাড়াও কিছু গবেষণা থেকে ধারণা করা হয় যে সাধারণত গর্ভকালীন সময়ে যেসব খাবার (যেমন টক ফল) খেলে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়ার সম্ভাবনা একটু কমে যায়—সেসব খাবার খাওয়ার প্রতি তীব্র ইচ্ছা জন্মেতবে এসবের পক্ষে এখনও জোরালো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ১১৫–১৬ কেজি ওজন বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক একটি ঘটনাতবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত তেলচর্বিযুক্ত ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে অথবা খাবারের পরিমাণ পরিমিত না রাখলে ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যেতে পারে ওজন প্রয়োজনের চেয়ে বেড়ে গেলে সেটি মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে গর্ভাবস্থায় চিনি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হলেই যে আপনি সরাসরি গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন এমন কোনো তথ্য গবেষণায় পাওয়া যায়নিতবে এই জাতীয় খাবার বেশি খেলে ওজন বেড়ে যায় আর ওজন বেড়ে গেলে গর্ভকালীন জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায় এসব জটিলতার মধ্যে রয়েছে উচ্চ রক্তচাপ প্রিএক্লাম্পসিয়া গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সিজার (সিজারিয়ান) অপারেশন করানোর প্রয়োজন হওয়া রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি হওয়া গর্ভপাত বা গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হওয়ামায়ের পাশাপাশি গর্ভের শিশুও নানান ধরনের সমস্যায় ভুগতে পারে যেমন নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অপরিণত (প্রিম্যাচিউর) অবস্থায় জন্মগ্রহণ করা গর্ভের শিশুর আকার অস্বাভাবিক বড় হওয়া জন্মগত ত্রুটি দেখা দেওয়া মৃত শিশু জন্ম হওয়া ভবিষ্যতে অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হওয়া গর্ভকালীন সময়ে আপনার কোনো খাবারের প্রতি হঠাৎ করেই অরুচি শুরু হতে পারে অরুচির কারণে আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকা থেকে কোনো পুষ্টিকর খাবার বাদও পড়ে যেতে পারে এমন সমস্যায় প্রায় অনেক গর্ভবতী মায়েরাই ভোগেনগর্ভকালীন সময়ে আপনার কোনো খাবারের প্রতি হঠাৎ করেই অরুচি শুরু হতে পারে অরুচির কারণে আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকা থেকে কোনো পুষ্টিকর খাবার বাদও পড়ে যেতে পারে এমন সমস্যায় প্রায় অনেক গর্ভবতী মায়েরাই ভোগেনতবে সবারই এমন সমস্যা হয় না এ ধরনের সমস্যায় ভুগলে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই এক্ষেত্রে একটু সচেতনতার সাথে খাবার তালিকা বাছাই করতে হবে তাহলেই আপনার খাবার তালিকায় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হবে না ফলে আপনি অপুষ্টিসহ অন্যান্য কিছু সমস্যা সহজেই এড়িয়ে চলতে পারবেন গর্ভাবস্থায় সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো সময় থেকে কোনো খাবারের প্রতি অরুচি শুরু হয় না একেকজনের ক্ষেত্রে একেকসময়ে ও একেক খাবারের প্রতি এই লক্ষণ দেখা দেয় আবার কারও কারও এধরনের কোনো লক্ষণই প্রকাশ পায় না গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়ার প্রতি অরুচি তৈরি হয় তার নির্দিষ্ট কোনো তালিকা নেই ভিন্ন ভিন্ন নারীর ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে এমন লক্ষণ দেখা দেয়যেহেতু অরুচির কোনো নির্দিষ্ট ধরন নেই সেহেতু আপনার যেকোনো খাবারের প্রতিই অরুচি সৃষ্টি হতে পারে তবে সাধারণত মাছ মাংস পেঁয়াজ ও ডিমের প্রতি অরুচি বেশি দেখা যায়[১] কারও কারও ক্ষেত্রে কিছুটা কড়া গন্ধযুক্ত যেকোনো খাবারে বেশি অরুচি হয়ে থাকেপুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারে অরুচি হলে অনেকেরই অপুষ্টিতে ভোগার সম্ভাবনা থাকে তাই কোনো নির্দিষ্ট পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারে অরুচি হলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া ভালো এতে করে ডাক্তার আপনাকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ ঔষধ অথবা বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করতে পারেন গর্ভাবস্থায় যদি অপুষ্টিকর খাবারে (যেমন ভাজাপোড়া) অরুচি হয় তাহলে এসব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন তবে গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবারে অরুচি হলে আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকা তৈরির সময়ে একটু সতর্ক থাকতে হবে যাতে অরুচির কারণে কোনো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বাদ না যায়এক্ষেত্রে যেসব পরামর্শ মেনে চলতে পারেন—১ প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পুষ্টিমানের খাবার খানযেসব খাবারে অরুচি হয় তার পরিবর্তে বিকল্প পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন যেমন আপনার মাছ খেতে অরুচি হলে এর পরিবর্তে মাংস ডিম ও দুধ একটু বেশি করে খানকোনো নির্দিষ্ট ধরনের পুষ্টিগুণের সব খাবারের প্রতি অরুচি হলেও চেষ্টা করুন অল্প অল্প করে কয়েকবারে খাওয়ার প্রয়োজনে রান্নার পদ্ধতি বদল করে নিজের পছন্দমতো উপায়ে রান্না করে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুনতবে অপুষ্টি প্রতিরোধে অরুচি হলেও কোনো পুষ্টিকর খাবারকে তালিকা থেকে একেবারেই বাদ দিয়ে দেবেন নাপড়ুন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা২ হালকা ও গন্ধহীন খাবার খানগন্ধযুক্ত খাবারে অরুচি হলে তার পরিবর্তে সাময়িকভাবে গন্ধহীন হালকা ও শুকনা খাবার খেতে পারেন যেমন মুড়ি চিড়া অথবা বিস্কুট তবে এসব খাবারে সব পুষ্টি উপাদান থাকে না তাই এসব খাবার খাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের খাবারগুলোও অল্প অল্প কয়েকবারে খাওয়ার চেষ্টা করবেনএ ছাড়াও অনেক সময়ে কোনো খাবারের গন্ধেও বমি বমি ভাব হতে পারে ফলে সেই খাবার খেতে অনীহা তৈরি হয় আপনার এমন সমস্যা থাকলে লেবু অথবা অন্য কোনো টক ফল দিয়ে খাবার খেতে পারেন ধারণা করা হয় যে গর্ভকালীন সময়ে যেসব টক ফল খেলে বমি বমি ভাব হওয়ার সম্ভাবনা একটু কমে যায়[২] ৩ ডাক্তারের পরামর্শ নিনঅরুচির সমস্যা বেড়ে গেলে এবং সাধারণ পরামর্শে কাজ না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডাক্তার আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু পুষ্টি উপাদানের জন্য ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন এতে আপনার অপুষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রোধ করা যাবে গর্ভাবস্থায় অরুচি হওয়ার জন্য দায়ী নির্দিষ্ট কোনো কারণ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি তবে ধারণা করা হয় যে গর্ভাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তনের কারণে রুচির এমন পরিবর্তন ঘটে গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো আপনি জ্ঞান হারাতে পারেন কিংবা জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা অনুভব করতে পারেন বিশেষ করে বসা থেকে হুট করে উঠে দাঁড়ালে অথবা চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে এমনটা হতে পারেগর্ভাবস্থায় কখনো কখনো আপনি জ্ঞান হারাতে পারেন কিংবা জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা অনুভব করতে পারেন বিশেষ করে বসা থেকে হুট করে উঠে দাঁড়ালে অথবা চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে এমনটা হতে পারেগর্ভাবস্থায় জ্ঞান হারানো সাধারণত দুশ্চিন্তার কিছু না হলেও কোন কোন ক্ষেত্রে এর জন্য চিকিৎসা নিতে হবে তা জেনে রাখা জরুরি আপনার ব্রেইনে যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত পৌঁছায় না তখন অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয় এটি থেকে আপনি অজ্ঞান হতে পারেন গর্ভাবস্থায় যেসকল কারণে আপনি জ্ঞান হারাতে পারেন সেগুলো হচ্ছে—ব্লাড প্রেশার বা রক্তচাপ কমে গেলে অতিরিক্ত গরম থেকে রক্তে সুগার বা গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ কমে গেলে রক্তশূন্যতা থাকলে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলেএ ছাড়া পেটের আকার বেড়ে গেলে তা রক্তনালীর উপর চাপ দেয় ফলে রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন জ্ঞান হারানোর ঠিক আগ মুহূর্তে আপনার যে লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে—মাথা ঘুরানো স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত অথবা গভীর শ্বাস নেওয়া হঠাৎ করে অনেক বেশি ঘাম হওয়া এবং হাতপা ঠান্ডা হয়ে আসা কানে ঝিঁঝিঁ করা বা চিকন বাঁশির মতো শব্দ শোনা চোখে ঝাপসা দেখা অথবা চোখের সামনে দাগের ন্যায় দেখা বমি বমি ভাব বা অসুস্থ বোধ করা বারবার হাই তোলা মাথা হালকা লাগাঅজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে ব্রেইন ও হার্ট একই লেভেলে থাকে তাই হার্টকে ব্রেইন পর্যন্ত রক্ত পাম্প করতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না ফলে ২০ সেকেন্ডের মধ্যেই সাধারণত জ্ঞান ফিরে আসেজ্ঞান ফিরে আসার পর কিছুক্ষণ পর্যন্ত বিভ্রান্ত লাগাটা স্বাভাবিক এ ছাড়া ৩০ মিনিট পর্যন্ত আপনার দুর্বল ও ক্লান্ত লাগতে পারে এমনকি অজ্ঞান হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে আপনি কী করছিলেন তাও মনে না থাকতে পারেএক্ষেত্রে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে এটি ঠিক হয়ে যায় তবে পরবর্তী চেকআপে আপনার চিকিৎসককে অজ্ঞান হওয়ার ঘটনার সম্পর্কে জানাতে হবে আপনার মাথা ঘুরালে অথবা অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হচ্ছে বুঝতে পারলে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন—আপনার যদি দাঁড়ানো অবস্থায় এমনটা হয় তাহলে কোথাও বসে পড়ুন বসার পরেও যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তাহলে আশেপাশে বিছানা বা সোফা থাকলে একদিকে কাত হয়ে শুয়ে পড়ুনআশেপাশের কাউকে জানিয়ে রাখুন যাতে প্রয়োজনে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারে আঁটসাঁট বা গরম কাপড় পরা থাকলে খুলে ফেলুন অথবা আলগা করুন যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে আপনি যেই ঘরে আছেন সেখানটায় বাতাসের চলাচল নিশ্চিত করুন আপনি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন মনে হলে নিজে বেশি হাঁটাহাঁটি না করে অন্য কাউকে ঘরের দরজাজানালা খুলে দিতে বলুন পানি পান করুন এবং হালকা নাস্তা জাতীয় খাবার খান অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে দুর্ঘটনাবশত আপনি আঘাত পেতে পারেন আঘাত গুরুতর হলে তা থেকে অনেকসময় মা ও শিশুর জীবন ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে সেক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে হবেএ ছাড়া গর্ভাবস্থায় জ্ঞান হারানোর সাথে মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্পর্ক পাওয়া যায় যেমন গর্ভাবস্থায় জ্ঞান হারিয়েছেন এমন মায়েদের ক্ষেত্রে অকাল প্রসব ও শিশুর জন্মগত ত্রুটি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা বেশি থাকতে পারে[১] সন্তান জন্মদানের পরবর্তী বছরে মায়ের হার্টবিট অনিয়মিত হওয়া কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সমস্যাও কিছুটা বেড়ে যেতে পারেএজন্য যেসব মায়ের গর্ভকালীন সময়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে তাদেরকে গর্ভকালে এবং সন্তান জন্মদানের পর—উভয় সময়েই নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে তবে গর্ভকালে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বেশিরভাগ মাই সাধারণত সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেনকখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অজ্ঞান কিংবা অজ্ঞান ভাব হওয়ার পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলোর কোনোটি থাকলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি— যোনিপথ দিয়ে রক্তপাত হলে তলপেটে ব্যথা হলে বুকে ব্যথা হলে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে বুক ধড়ফড় করলে চোখে ঝাপসা দেখলে কিংবা দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন আসলে মাথা ব্যথা হলে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গিয়ে মাথা অথবা পেটে আঘাত পেলে কিংবা ১ মিনিটের বেশি সময় ধরে অজ্ঞান থাকলে আপনি যেভাবে অজ্ঞান হওয়া অথবা অজ্ঞানবোধ করা থেকে বাঁচতে পারেন—বিছানা থেকে ধীরেসুস্থে নামুন উঠে দাঁড়ানোর আগে বিছানার সাইডে কিছুক্ষণ বসে নিন বসা অবস্থা থেকে উঠতে গেলেও আস্তে ধীরে উঠুন খুব গরম পানিতে গোসল করবেন না গোসলখানা থেকে ধীরেসুস্থে ও সতর্কতার সাথে বের হোন অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকবেন না প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন নিয়মিত ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন এতে শরীর ও ব্রেইনে রক্ত চলাচল ভালো হয়[২] চিৎ হয়ে শুয়ে থাকবেন না বিশেষ করে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে চিৎ হয়ে শোয়া পরিহার করুনএকজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবেতবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেনগর্ভকালীন সময়ের শেষের দিকে এবং প্রসববেদনার সময় পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা ঠিক নয় গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ পর ঘুমানোর সময়েও পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা থেকে বিরত থাকবেন কেননা এভাবে শুয়ে থাকলে মৃত শিশু জন্মানোর সম্ভাবনা বাড়তে পারেএসবের পাশাপাশি কখনোই কোনো বেলার খাবার বাদ দিবেন না—এমনকি যদি আপনার মর্নিং সিকনেস থাকে তাহলেও অল্প অল্প করে নিয়মিত খেয়ে নিন এতে আপনার রক্তে সুগার লেভেল নেমে যাবে না আপনি যদি একজন গর্ভবতী নারীকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে দেখেন তাহলে তাকে নিচে আলতো করে বামদিকে কাত করে শুইয়ে দিন তার বাম পা এসময় বুকের দিকে ভাজ করে রাখুন (ছবিতে দেখুন)ছবি রিকভারি পজিশননিচের লক্ষণগুলো উপস্থিত থাকলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন—এক মিনিট ধরে ছবিতে দেখানো পজিশনে রাখার পরেও যদি তার জ্ঞান না ফেরে রোগীর খিঁচুনি হয় অথবা ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে অজ্ঞান হয়ে পড়ার সময় গুরুতর জখমের শিকার হয় (বিশেষ করে মাথায়) এটিই তার প্রথম অজ্ঞান হওয়ার ঘটনা হয় রোগী উচ্চ রক্তচাপের জন্য আগে থেকেই ঔষধ নিয়ে থাকলেএম্বুলেন্স না আসা অথবা জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত রোগীর সাথেই থাকুন সাধারণত গর্ভাবস্থাতে আপনার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময়ের মতোই থাকে তবে অনেক মাই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগার কথা বলে থাকেন এ ছাড়া আমাদের দেশের আবহাওয়ায় গরমের মধ্যে গর্ভধারণ করা কিছুটা অস্বস্তিকর হতে পারেসাধারণত গর্ভাবস্থাতে আপনার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময়ের মতোই থাকে তবে অনেক মাই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগার কথা বলে থাকেন এ ছাড়া আমাদের দেশের আবহাওয়ায় গরমের মধ্যে গর্ভধারণ করা কিছুটা অস্বস্তিকর হতে পারেঅতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতা থেকে হিট এক্সোশন হিট স্ট্রোক এর মতো জটিলতাও হবার সম্ভাবনা থাকে গর্ভাবস্থায় গরম লাগলে কীভাবে সহজে স্বস্তিতে থাকবেন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন—তা এই আর্টিকেলটিতে তুলে ধরা হয়েছে সাধারণত আমাদের যখন গরম লাগে তখন আমাদের শরীর ঘামের মাধ্যমে ঠান্ডা হওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু কোনো কারণে শরীরে পানির ঘাটতি থাকলে ঘাম কম তৈরি হয় ফলে ঘামের মাধ্যমে অতিরিক্ত তাপ বের করে দেওয়া সম্ভব হয় না গর্ভাবস্থায় পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকেএর ফলে ঘামের মাধ্যমে শরীর ঠান্ডা হতে পারে না এবং স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম লাগেআবার গর্ভাবস্থায় আপনি নিজের পাশাপাশি গর্ভের শিশুকেও বহন করেন এতে করে আপনার শরীরের সব অঙ্গকেই স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত কাজ করতে হয় যার ফলে আপনার শরীরে মেটাবোলিজম বা খাদ্য হজমের হারও বাড়ে উচ্চ মেটাবলিক হারের ফলে শরীরে বাড়তি তাপ উৎপন্ন হয় এ কারণেও অতিরিক্ত গরম লাগতে পারেপাশাপাশি গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে বিভিন্ন হরমোন এর মাত্রায় তারতম্য ঘটে অতিরিক্ত হরমোনও গরম লাগার পেছনে দায়ী হতে পারে এ ছাড়াও আপনার শিশুর শরীরে পুষ্টি উপাদান সরবরাহের জন্য আপনার শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহ থেকেও অতিরিক্ত গরম লাগতে পারে গর্ভাবস্থায় যেকোনো মায়েরই অতিরিক্ত গরম লাগতে পারে তবে কিছু ক্ষেত্রে আপনার সমস্যা বেশি হতে পারে যেমন—আপনার যদি আগে থেকেই জটিল ও দীর্ঘ মেয়াদি কোনো অসুখ থাকে যেমন ডায়াবেটিস হার্ট ও কিডনির রোগ মানসিক সমস্যা আপনি যদি নিয়মিত ঘরের বাইরে কাজ করেন আপনি যদি বিল্ডিং এর সবচেয়ে উপরের তলায় থাকেন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের তাপমাত্রা যদি ৩৯° সেন্টিগ্রেড বা ১০২২° ফারেনহাইটের ওপরে হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আপনার নিচের সমস্যাগুলো দেখা যেতে পারে—হিট ক্র্যাম্পআপনি যদি গরমের মধ্যে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার শরীরে এক ধরনের খিঁচুনি হতে পারে সাধারণত ব্যায়ামের ফলে যেই অতিরিক্ত ঘাম হয় তার সাথে শরীরের লবণ ও পানি বেশি পরিমাণে বের হয়ে গেলে এমনটা হয়ে থাকে এর ফলে আপনার হাত পা ও পেট ব্যথা হতে পারেহিট ক্র্যাম্প হলে করণীয়কাজ বা ব্যায়াম বন্ধ করে ঠান্ডা জায়গায় সরে আসুন পর্যাপ্ত পানি পান করুন হিট ক্র্যাম্পের ব্যথা সেরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত শারীরিক শ্রম করা থেকে বিরত থাকুনযখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন১ ঘন্টার বেশি সময় ক্র্যাম্প থাকলে[৩] আপনার খাবারে সোডিয়াম লবণের ঘাটতি থাকলে এবং এর সাথে হিট ক্র্যাম্প হলে হৃদরোগের সমস্যা থাকলেডিহাইড্রেশনশরীর গরম হয়ে গেলে ঘাম বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে দেহ থেকে যে পরিমাণ পানি বের হয়ে যায় সে তুলনায় আপনার পানি গ্রহণের পরিমাণ কম হলে আপনার শরীরে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন দেখা যেতে পারেপানিশূন্যতা হলে আপনার শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হতে পারে এমনকি আপনার প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল দিয়ে রক্ত প্রবাহ কমে যেতে পারে ডিহাইড্রেশনের ফলে আপনার ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন নামের প্রসবের প্রস্তুতিমূলক সংকোচন শুরু হয়ে যেতে পারে[৪] পানিশূন্যতার কারণে আপনি দাঁড়াতে গেলে মাথা ঘুরিয়ে পড়েও যেতে পারেন[৫]আপনার ডিহাইড্রেশন হয়েছে কীভাবে বুঝবেনঅনেক বেশি তৃষ্ণার্ত বোধ করবেন গাঢ় হলুদ ও তীব্র গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হবে মাথা ঘুরাবে ক্লান্তি বোধ করবেন হার্টবিট দ্রুত ও জোরালোভাবে অনুভব করবেন[৬] মুখ ঠোঁট শুকিয়ে যাবে চোখ কোটরে ঢুকে যাবে দিনে চারবারের কম ও খুবই অল্প পরিমাণে প্রস্রাব হবেহাত পা ফুলে যাওয়াগরমের মধ্যে আপনার শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে আপনার শরীর নিজ থেকে পানি ধরে রাখার চেষ্টা করে এই অতিরিক্ত পানি শরীরের নিচের দিকের অংশগুলোতে জমা হয় বিশেষ করে যখন আপনি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন এর ফলে আপনার হাতপা গোড়ালি পায়ের পাতা ফুলে যেতে পারে—একে ডাক্তারি ভাষায় ইডেমা বা সোয়েলিং বলেগর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই হাতপায়ে পানি জমার প্রবণতা থাকে অতিরিক্ত গরমের কারণে তা আরও বেড়ে যায়হাতপা ফুলে যাওয়া রোধে করণীয়এক নাগাড়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা এড়িয়ে চলুন আরামদায়ক জুতা পরুন অনেক বেশি পানি পান করুনএসবের পাশাপাশি নিচের ব্যায়ামটিও করতে পারেন—আপনার পা বাঁকিয়ে ও সোজা করে ৩০ বার উঠানামা করবেন প্রত্যেক পা ৮ বার করে বৃত্তাকারে ঘুরাবেনহিট র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি বা ঘামাচিগর্ভাবস্থায় গরম থেকে আপনার ছোটো ছোটো ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ হতে পারে এসব ফুসকুড়ি গুচ্ছাকারে থাকে এবং অনেকটা ব্রণ বা ছোটো ফোস্কার মতো দেখায়[৭] কাঁধ বুক বগল কুঁচকিতে সাধারণত এসব ফুসকুড়ি বা ঘামাচি বেশি হয়ে থাকেহিট র‍্যাশ হলে করণীয়[৮]ঠান্ডা জায়গায় থাকুন ফুসকুড়িগুলোকে শুকনো রাখুন ফুসকুড়ি কিংবা ঘামাচি থেকে স্বস্তি পেতে পাউডার লাগাতে পারেনমেলাসমাএটি গর্ভাবস্থায় গরম থেকে হওয়া ত্বকের পরিচিত একটি সমস্যা এর ফলে ত্বকের কিছু কিছু জায়গায় বাদামী অথবা ধূসর রঙের ছোপ ছোপ দাগ পড়ে বিশেষত মুখে এ ধরনের সমস্যা হয় প্রতি দুই জনের মধ্যে একজন গর্ভবতীর এ ধরনের সমস্যা হতে পারেমেলাসমা প্রতিরোধে করণীয়সূর্যের সরাসরি তাপ বা আল্ট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন বাইরে বের হলে টুপি সানগ্লাস ভালো SPF যুক্ত সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুনগর্ভাবস্থায় মেলাসমা নিয়ে চিন্তিত হবেন না গর্ভাবস্থার কারণে আপনার এ সমস্যা হলে প্রসবের কয়েক মাসের মধ্যেই সাধারণত এটি সেরে যাবেহিট এক্সোশনঅতিরিক্ত গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় থাকলে আপনার হিট এক্সোশন হতে পারে এটি এক ধরনের হাইপারথার্মিয়া বা উচ্চ তাপমাত্রা জনিত সমস্যা দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে এটি হিট স্ট্রোকে পরিণত হতে পারে[৯]হিট এক্সোশন এর ক্ষেত্রে যদি আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টার মধ্যে আপনি সুস্থ বোধ করেন সেক্ষেত্রে আপনার বিশেষ কোনো চিকিৎসার দরকার হবে না তবে এক ঘন্টার মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন[১০]হিট এক্সোশনে আপনার নিচের লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে[১১]—তীব্র ঘাম হওয়া চামড়া ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া মাংসপেশিতে ব্যথা হওয়া মাথা ব্যথা কিংবা মাথা ঘুরানো ক্লান্তিভাব ও দুর্বল লাগাবমি বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া জ্ঞান হারিয়ে ফেলাহিট এক্সোশন হলে করণীয়গরম জায়গা থেকে ঠান্ডা জায়গায় সরে আসুন পানি পান করুন অতিরিক্ত কাপড় খুলে ফেলুন ঠান্ডা ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছুন সম্ভব হলে বাথটাবে ঠান্ডা পানিতে বসে থাকুন এক ঘন্টার মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যান বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন[১২]হিট স্ট্রোকহিট স্ট্রোক উচ্চ তাপমাত্রাজনিত একটি মারাত্মক জটিলতা এতে শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারায় ফলে দ্রুত শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এমনকি ১০১৫ মিনিটের মধ্যে তাপমাত্রা ১০৬° কিংবা আরও বেশি বাড়তে পারে৷[১৩] জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা না হলে এতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে[১৪] হিট স্ট্রোকের বিপদচিহ্ননিচের লক্ষণগুলি দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন[১৫]—শরীরের তাপমাত্রা ১০৩° ফারেনহাইটের বেশি হলে অনেক বেশি গরমেও ঘাম না হলে এবং শরীরের চামড়া উত্তপ্ত শুষ্ক ও লালচে হয়ে থাকলে পালস বা নাড়ি স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত ও জোরালোভাবে অনুভূত হলে দপদপ করে মাথাব্যথা হতে থাকলে মাথা ঘুরালে বমিভাব থাকলে আশেপাশে কী হচ্ছে কিছু বুঝতে না পারলে কিংবা অসংলগ্ন কথাবার্তা বা আচরণ করলে জ্ঞান হারালেগর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগার পাশাপাশি এসব লক্ষণের যেকোনোটা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে হিট স্ট্রোকের ফলে আপনার হার্ট ব্রেইন কিডনি মাংসপেশির সমস্যা হতে পারে তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা করা যাবে নাহিট স্ট্রোক হলে প্রাথমিক করণীয়[১৬]আক্রান্ত ব্যক্তিকে ছায়াযুক্ত ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে আসুন যত দ্রুত সম্ভব তাকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করুন গায়ে ঠান্ডা পানি ঢালুন কিংবা ঠান্ডা কাপড় দিয়ে তাকে জড়িয়ে রাখুন থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপতে থাকুন তাপমাত্রা ১০১১০২° ফারেনহাইটএ না পৌঁছানো পর্যন্ত ঠান্ডা করার চেষ্টা চালিয়ে যান ইতোমধ্যে যতদ্রুত সম্ভব আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিকটবর্তী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসুন কিংবা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান নিচের কিছু সহজ পরামর্শ মেনে চলার মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় ওভারহিটিং হওয়া থেকে স্বস্তি পেতে পারেন—১ পর্যাপ্ত পানি পান করুন একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে[১৭] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি আপনার ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন প্রয়োজনে ঘরের বাইরে গেলে পানির বোতল সাথে নিন২ নিয়মিত গোসল করুন গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগলে নিয়মিত গোসল করুন প্রয়োজনে ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছুন গোসলের পানির তাপমাত্রা যেন ৩২° সেন্টিগ্রেড এর বেশি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৩ আরামদায়ক পোশাক পরুন গরমের সময় যেন বাতাস চলাচল করতে পারে এমন ঢিলেঢালা পোশাক পরুন সুতি ও লিনেন এর কাপড় এসময় আরামদায়ক হালকা রঙের পোশাক সূর্যের আলো কম শোষণ করে গর্ভাবস্থায় হালকা রঙের পোশাক পরুন এবং কালো বা গাঢ় রঙের পোশাক এড়িয়ে চলুন৪ খাবার গ্রহণে সতর্ক হোন গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগলে হালকা খাবার খান ফল সালাদ জাতীয় খাবার এবং সহজে পরিপাক হয় এমন খাবার খান যেসব খাবারে পানির পরিমাণ বেশি (যেমন তরমুজ) এমন ফলমূল খেতে পারেন৫ কাজ গুছিয়ে নিন গর্ভাবস্থায় যতটুকু সম্ভব বাইরের কাজ এড়িয়ে চলুন রোদের মধ্যে কাজ করতে হলে কিছুক্ষণ পর পর ছায়ায় বিশ্রাম নিন এবং পানি পান করুন গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরমে ব্যায়াম বা ভারী কাজকর্ম এড়িয়ে চলুন৬ কড়া রোদ এড়িয়ে চলুন সকাল ১০টা–১১টা থেকে বিকেল ২টা–৩টা পর্যন্ত কড়া রোদ থাকে প্রয়োজন ব্যতীত এসময় ঘরের বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন ঘরে থাকা অবস্থায় বাইরে খুব বেশি কড়া রোদ থাকলে পর্দা টেনে দিন৭ রোদ প্রতিরোধী দ্রব্য ব্যবহার করুন কড়া রোদে বাইরে বের হতে হলে ছাতা ব্যবহার করুন এবং ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন ছাতা না থাকলে হ্যাট বা টুপি ব্যবহার করুন এবং চোখে সানগ্লাস পরুন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন সানস্ক্রিন (SPF 30+) ব্যবহার করুন৮ প্রস্রাবের দিকে নজর দিন আমাদের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা গেলে কিডনি ঘন গাঢ় রঙের কম পরিমাণে প্রস্রাব তৈরি করে অর্থাৎ কম পরিমাণে ও গাঢ় রঙের প্রস্রাব আপনার শরীরে পানিশূন্যতা নির্দেশ করে[১৮] তাই এসময় প্রস্রাবের দিকেও খেয়াল রাখুন গর্ভকালীন সময়ে অনেক নারীকে চুলকানির সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় সাধারণত গর্ভকালীন শারীরিক ও হরমোন জনিত নানান পরিবর্তনের কারণে এমন চুলকানি হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পেটে চুলকানি হলেও পেটের পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য স্থানেও চুলকানি হতে পারেগর্ভকালীন সময়ে অনেক নারীকে চুলকানির সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় সাধারণত গর্ভকালীন শারীরিক ও হরমোন জনিত নানান পরিবর্তনের কারণে এমন চুলকানি হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পেটে চুলকানি হলেও পেটের পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য স্থানেও চুলকানি হতে পারেকিছু সহজ কৌশল অনুসরণ করার মাধ্যমে গর্ভকালীন এই চুলকানি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে তবে কিছু ক্ষেত্রে চুলকানির সাথে এমন কিছু লক্ষণ থাকতে পারে যা জটিল কোনো রোগ নির্দেশ করে সেক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন গর্ভাবস্থায় যেকোনো সময়েই আপনার পেট চুলকানির সমস্যা শুরু হতে পারে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে পেট চুলকানির সমস্যা বেশি দেখা যায়পেট চুলকানোর পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য জায়গাতেও (যেমন পায়ু বা পায়খানার রাস্তার চারিদিকে যৌনাঙ্গের আশেপাশে ও স্তনে) চুলকানির সমস্যা হতে পারে আবার কারও কারও সারা শরীরে চুলকানি থাকতে পারে গর্ভাবস্থায় মূলত তিনভাবে চুলকানি হতে পারে—সাধারণত গর্ভকালীন নানান শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে চুলকানি হতে পারে গর্ভধারণের আগে থেকে কোনো চর্মরোগ কিংবা চুলকানির সমস্যা থাকলে গর্ভাবস্থায় সেটা বেড়ে গিয়ে ভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারে যেমন এটোপিক একজিমা গর্ভাবস্থার সাথে সম্পর্কিত বিশেষ কিছু রোগ ও স্বাস্থ্য জটিলতা চুলকানি সৃষ্টি করতে পারেবেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভধারণ ছাড়া এই চুলকানির পেছনে নির্দিষ্ট কারণও খুঁজে পাওয়া যায় না মোটা দাগে ধারণা করা হয় যে এসময়ে কিছু হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গর্ভাবস্থায় চুলকানি হয়উল্লেখ্য শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় পেটে চুলকানির সমস্যা বেশি হয়গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে পেটের আকারও বড় হয় এতে পেটের ত্বক অনেকটা প্রসারিত হয়ে সেখানে টান পড়ে ফলে সেখানকার নার্ভে কিছু পরিবর্তন হয়ে পেটে চুলকানি হতে পারেকিছু ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় চুলকানির সাথে অন্য কোনো চর্মরোগ অথবা লিভারের রোগের সম্পর্ক থাকতে পারে এসব ক্ষেত্রে সাধারণত পেট চুলকানির পাশাপাশি আরও কিছু লক্ষণ দেখা দেয় এমন হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয় এজন্য চুলকানির সাথে সাথে আপনার অন্য কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখুন আর্টিকেলের পরবর্তী অংশে এই রোগগুলোর লক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে গর্ভাবস্থায় চুলকানিতে ভোগা ৬০ নারীর ক্ষেত্রেই শরীরে কোনো দানা র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি হয় না তবে সাধারণ চুলকানি মা ও গর্ভের শিশুর জন্য তেমন জটিলতা সৃষ্টি না করলেও তা অনেক গর্ভবতীর জন্য ভোগান্তি ও বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায় নিচে ৮টি কার্যকর সমাধান তুলে ধরা হয়েছে যা আপনাকে ঘরোয়াভাবেই চুলকানি উপশমে সাহায্য করতে পারে— ১ চুলকানির স্থানে ভেজা কাপড় অথবা বরফ দেওয়া ভেজা কাপড় ও বরফ চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে এজন্য যে স্থানে চুলকাচ্ছে তার ওপর একটি ভেজা কাপড় অথবা বরফ মোড়ানো কাপড় দিয়ে রাখতে পারেন এভাবে ৫–১০ মিনিট আলতো করে চেপে ধরে রাখুন এতেও কাজ না হলে চুলকানি না কমা পর্যন্ত এভাবে আরও কিছুক্ষণ ধরে রাখতে পারেন ২ নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করাশুষ্ক ত্বকের চুলকানি অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে শরীরে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা ধরে রাখার মাধ্যমে শুষ্কতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য আপনি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেনময়েশ্চারাইজিং ক্রিম অথবা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করতে পারলে বেশি ভালো হয়হাতের কাছে না পেলে ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করতে পারেন এক্ষেত্রে সুগন্ধিবিহীন ময়েশ্চারাইজারগুলো বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন কারণ অনেকসময় সুগন্ধি প্রসাধনসামগ্রী চুলকানি রিঅ্যাকশন ঘটিয়ে চুলকানি বাড়িয়ে দিতে পারেগোসল করার পর পরই তোয়ালে দিয়ে হালকা করে শরীর মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে ফেলুনএটি শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে মুখ ধোয়ার পরেও এভাবে ময়েশ্চাইরাইজার লাগাতে পারেন চুলকানি কমাতে দিনে দুইবার ভারী ধরনের ময়েশ্চারাইজার লাগানো ভালোসারাদিনে অন্তত গোসলের পরে একবার এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেনদামি ময়েশ্চারাইজার হলেই সেটা বেশি কার্যকরী হবে এরকম ভাবার কোনো কারণ নেই আপনি যেকোনো ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন সেই সাথে ময়েশ্চারাইজার কেনার আগে প্যাকেটের গায়ে লাগানো লোগো মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ ও ব্যবহৃত উপাদানগুলোর নাম ভালো করে দেখে কেনার চেষ্টা করুন ৩ মেনথল অথবা ক্যালামাইনযুক্ত ক্রিমলোশন লাগানোচুলকানির স্থানে মেনথল অথবা ক্যালামাইনযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এগুলো গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা নিরাপদ এগুলো চুলকানি থেকে কিছুটা আরাম দিতে পারে ৪ গন্ধহীন ও মৃদু টয়লেট্রিজ ব্যবহার করাসাবান বডি ওয়াশ ক্রিম লোশন ও ময়েশ্চারাইজারে সাধারণত সুগন্ধি মেশানো থাকে এসব সুগন্ধিযুক্ত টয়লেট্রিজ ব্যবহারে কারও কারও চুলকানি বেড়ে যেতে পারে তাই গন্ধহীন সাবান ক্রিম ও লোশন ব্যবহার করার চেষ্টা করুন এতে চুলকানির সমস্যা কিছুটা কমতে পারে সাবান ও বডিওয়াশের ক্ষেত্রে গন্ধহীন এবং মৃদু কম ক্ষারযুক্ত পণ্যটি বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন ৫ অতিরিক্ত গরম পানির ব্যবহার এড়িয়ে চলাবেশি গরম পানি ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে যা থেকে চুলকানি হতে পারে এজন্য গোসলের সময়ে বেশি গরম পানির ব্যবহার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন খুব গরম পানির পরিবর্তে কুসুম গরম পানি বেছে নিন চেষ্টা করুন ১০ মিনিটের মধ্যে গোসল সেরে ফেলতে গরম পানির পাশাপাশি খুব গরম খুব ঠাণ্ডা কিংবা খুব শুষ্ক আবহাওয়া এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন এগুলো চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে ৬ সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা পোশাক পরাজামাকাপড়ের সাথে বারবার ত্বকের ঘষা লাগলে ত্বকে জ্বালাপোড়া হয়ে চুলকানি বেড়ে যেতে পারে এজন্য এমন কোনো ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক বেছে নিন যেটা পরলে ত্বকের সাথে কম ঘষা লাগবেসিনথেটিক কাপড়ের তৈরি পোশাকের পরিবর্তে সুতির পোশাক বেছে নিন সুতি কাপড়ের ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে ফলে আপনার শরীরে ভালোমতো বাতাস লাগবে এতে আপনি বেশি আরাম পেতে পারেন ৭ ওটস মেশানো পানি ব্যবহার করাচুলকানি নিয়ন্ত্রণের একটি ভালো পদ্ধতি হচ্ছে ওটস মেশানো মিশ্রণ দিয়ে গোসল করা একে ইংরেজিতে ওটমিল বাথ বলা হয় বিদেশে দোকানে কিনতে পাওয়া যায় আপনি নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করে বাড়িতেও বানিয়ে নিতে পারেন—প্রথমে ওটস খুব মিহি গুঁড়া করুন গুঁড়া করার জন্য ব্লেন্ডার গ্রাইন্ডার কফি গুঁড়া করার মেশিন অথবা এই ধরনের যেকোনো মেশিন ব্যবহার করতে পারেন এক্ষেত্রে সবচেয়ে মিহি গুঁড়া বানানোর সেটিং বেছে নিনওটস ভালোভাবে গুঁড়া হয়েছে কি না সেটি পরীক্ষা করে দেখুন এজন্য এক টেবিল চামচ ওটস গুঁড়া নিয়ে তা এক গ্লাস গরম পানিতে মেশান পানিতে ভালোভাবে মিশে দেখতে দুধের মতো তরল তৈরি হয়ে গেলে বোঝা যাবে যে ওটসগুলো ভালোভাবে গুঁড়া হয়েছেযদি পানি দুধের মতো না হয়ে যায় তাহলে ওটস আরও ভালোভাবে গুঁড়া করুন তারপর আবার ভালোভাবে গুঁড়া হয়েছে কি না সেটি পরীক্ষা করার জন্য পানিতে মেশান এভাবে যখন ওটস সাথে সাথে পানি শুষে নিয়ে দেখতে দুধের মতো হয়ে যাবে তখন বুঝতে হবে যে ওটস ব্যবহারের জন্য তৈরিযদি বাথটাব থাকে ওটসগুলো বাথটাবের কুসুম গরম পানিতে ঢেলে দিন খেয়াল রাখবেন ওটস পানিতে ঢালার সময়ে যেন কল বা ট্যাপ থেকে চলন্ত পানি বাথটাবে পড়তে থাকে এতে করে ওটসের গুঁড়া পানির সাথে ভালোভাবে মিশে যাবে পানি ভালোভাবে নাড়িয়ে ওটসের গুঁড়া পুরো পানিতে মিশিয়ে দিন কোনো দলা ছাড়া পুরোপুরি মিশে গেলেই এই ওটস মেশানো পানি গোসলের উপযোগী হয়ে যাবে এতে সাবান শাওয়ার জেল অথবা বডি ওয়াশ ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন নেইএরপর বাথটাবে ওটস মেশানো পানিতে ১৫–২০ মিনিট শরীর ডুবিয়ে রাখতে হবে ওটস মেশানো পানিতে শরীর বেশিক্ষণ ডুবিয়ে রাখলে ত্বক কিছুটা শুষ্ক হয়ে যায় তাই এই পানি দিয়ে বেশিক্ষণ ধরে শরীর ভিজিয়ে রাখবেন না সবশেষে ওটস মেশানো পানি থেকে উঠে শরীরের যেসব স্থানে চুলকানি হয় সেসব স্থান হাত দিয়ে আলতো করে ঘষে নিতে পারেন উল্লেখ্য ওটস মেশানো পানি থেকে উঠে আলাদা করে সারা শরীর ধুয়ে ফেলার প্রয়োজন নেই তবে আপনি চাইলে বা অস্বস্তি লাগলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেনযদি বাথটাব না থাকে যদি আপনার বাসায় বাথটাব না থাকে তাহলে একটি পাত্রে কুসুম গরম পানির সাথে মিহি ওটস গুঁড়া একটু ঘন করে মেশান এরপর মিশ্রণটি একটি মসলিন জাতীয় কাপড়ে নিয়ে তা দিয়ে আপনার চুলকানির স্থানে আলতোভাবে স্পর্শ করুন এভাবেই ৩০ মিনিট মিশ্রণটি ত্বকের ওপর রেখে দিন এরপর আলাদা করে শরীর ধুয়ে ফেলার প্রয়োজন নেই তবে আপনি চাইলে বা অস্বস্তি লাগলে একটি পরিষ্কার কাপড় ও কুসুম গরম পানি দিয়ে ওটস এর গুঁড়াগুলো মুছে ফেলতে পারেন ৮ চুলকানোর পরিবর্তে বিশেষ নিয়ম মেনে চলাচুলকানির তাড়না আসলে সেটি দমিয়ে রাখা কঠিন কিন্তু চুলকানি ওঠা স্থানে চুলকালে কয়েক মুহূর্ত আরাম লাগলেও তা চুলকানির তাড়নাকে বাড়িয়ে দেয় এরপর আবার চুলকাতে ইচ্ছে করে এভাবে অনেক ক্ষেত্রেই চুলকানি একটা চক্রের মতো চলতে থাকে[১১] তা ছাড়া চুলকানোর ফলে ত্বকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষত সৃষ্টি হয় এসবের ভেতর দিয়ে জীবাণু ঢুকে ত্বকে ইনফেকশন ঘটাতে পারেতাই চুলকানি উঠলেও ত্বক না চুলকানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন চুলকানোর পরিবর্তে আঙুলের ত্বক দিয়ে চুলকানি ওঠা স্থানটি আলতো করে চেপে চেপে নিন ত্বকে আঘাত ও ইনফেকশন এড়াতে নখ ছোটো করে কেটে নিন এবং সবসময় মসৃণ ও পরিষ্কার রাখুন ৯ মানসিক চাপ মোকাবেলামানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন মানসিক চাপ চুলকানি বাড়িয়ে দিতে পারে গর্ভাবস্থায় পেটে বা শরীরে হালকা চুলকানি হলে তা সাধারণত আপনার কিংবা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর নয় তবে নিচের লক্ষণগুলোর কোনোটি দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরি—একটা নির্দিষ্ট সময়ে (সন্ধ্যার পরে) চুলকানি বেড়ে গেলে চুলকানির কারণে অনেক অস্বস্তি হলে শরীরের অন্যান্য জায়গায় চুলকানি হলেও হাত ও পায়ের তালুতে বেশি চুলকালে চুলকানির সাথে অন্য কিছু লক্ষণ দেখা গেলে একটানা অনেকদিন ধরে চুলকানি থাকলেএর কারণ হলো এগুলো গর্ভাবস্থার বিশেষ লিভারের রোগ অথবা অন্য কোনো চর্মরোগের লক্ষণ হতে পারে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করালে তা মা ও গর্ভের শিশুর জন্য মারাত্মক হতে পারে এই রোগের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—অনেক বেশি চুলকানি হওয়া বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের পাতায় তবে পুরো শরীরেও এমন চুলকানি হতে পারে সন্ধ্যায় ও রাতে চুলকানি বেড়ে যাওয়া অতিরিক্ত চুলকানির ফলে চামড়া উঠে যেতে পারে গাঢ় রঙের প্রস্রাব এবং ফ্যাকাসে পায়খানা হওয়া কিছু ক্ষেত্রে জন্ডিস হওয়া অর্থাৎ ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদাভ হয়ে যাওয়াডাক্তারি ভাষায় একে বলা হয় ইন্ট্রাহেপাটিক কোলেস্ট্যাসিস এই রোগটি কেবল গর্ভাবস্থাতেই হয় লিভারের এই রোগ খুব গুরুতর রূপ ধারণ করতে পারে এতে অকাল প্রসব ও মৃতপ্রসবের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে গর্ভাবস্থায় এমন কিছু নির্দিষ্ট চর্মরোগ হতে পারে যা সাধারণ অবস্থায় দেখা দেয় না এসব চর্মরোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে কিছু মিল থাকলেও র‍্যাশ ও রোগের ধরনে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে কমন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে চুলকানির সাথে লাল লাল ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ হওয়াএমন হলে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে তার পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন কেননা এসবের মধ্যে কিছু রোগ থেকে মা ও বিশেষ করে গর্ভের শিশুর মারাত্মক জটিলতায় ভোগার সম্ভাবনা রয়েছেচুলকানির সাথে সৃষ্টি হওয়া অন্য উপসর্গগুলো কোন রোগের কারণে হতে পারে এবং তাতে মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি কেমন তা জানতে নিচের ছকটি দেখুন[১৩]—গর্ভকালীন পেমফিগয়েডলক্ষণবুকেপেটে অথবা নাভির চারপাশে ছোটো ছোটো লাল র‍্যাশ ফোসকা বা ফুসকুড়ি সৃষ্টি হয় পরবর্তীতে এসব র‍্যাশ ও ফুসকুড়ি সারা দেহে ছড়িয়ে যায় পরবর্তীতে ফোসকাগুলো তরলে ভরে গিয়ে টানটান হয়ে উঠতে পারেঝুঁকিশিশুর সময়ের আগেই জন্মগ্রহণ করার ও আকারে ছোটো হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় মায়ের পরবর্তী গর্ভাবস্থাতেও গর্ভকালীন পেমফিগয়েড হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়পলিমরফিক ইরাপশন অফ প্রেগন্যান্সিলক্ষণপেটের ফাটা দাগের ওপরে খুব চুলকায় এমন লাল লাল ছোটো র‍্যাশ হয় তবে নাভির চারপাশের ত্বকে সাধারণত কোনো র‍্যাশ থাকে না ১–২ দিন পরে র‍্যাশগুলো হাতেপায়ে বুকেপিঠে ছড়িয়ে যায় এরপর একত্র হয় উঁচু উঁচু র‍্যাশ তৈরি করে ত্বক ফর্সা হলে লাল ফুসকুড়ির চারপাশ দিয়ে সাদা রিংয়ের মতো দাগ তৈরি হয়ঝুঁকিমায়ের চুলকানি ছাড়া মা ও শিশুর তেমন সমস্যা হয় নাপাস্টুলার সোরিয়াসিস অফ প্রেগন্যান্সিলক্ষণলাল লাল র‍্যাশ হয় র‍্যাশের মধ্যে পুঁজ থাকে সাধারণত বুকপেট হাত ও পায়ে এমন ফুসকুড়ি হয় নখ তার নিচের চামড়া থেকে কিছুটা উঠে উঠে যেতে পারে কারও কারও নখ সামান্য দেবেও যেতে পারেঝুঁকিগর্ভপাত মৃতপ্রসব সময়ের আগেই জন্মগ্রহণ করার এবং আকারে ছোটো সম্ভাবনা থাকে প্রসবের পরে মায়ের এই রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারেঅ্যাটোপিক ইরাপশন অফ প্রেগন্যান্সিলক্ষণমুখে ঘাড়ে বুকের ওপরের অংশে কনুইয়ে হাতে ও পায়ে একজিমার মতো র‍্যাশ হয় কখনো কখনো ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে পড়েঝুঁকিগর্ভের শিশুর তেমন সমস্যা হয় না মায়ের পরবর্তী গর্ভাবস্থাতেও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ঘরোয়া সমাধানগুলো অনুসরণের পরেও চুলকানির সমস্যা না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে লক্ষণ অনুযায়ী উপযুক্ত পরামর্শ ও ঔষধ দিয়ে সাহায্য করবেন চুলকানির সমস্যায় সাধারণত যেসব ঔষধ ব্যবহার হয় সেগুলো হলো—এমোলিয়েন্ট অয়েন্টমেন্ট ক্রিম ও লোশন অ্যান্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট স্টেরয়েড মলম ও ট্যাবলেটএসবের মধ্যে এমোলিয়েন্ট ছাড়া কোনো ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনোক্রমেই ব্যবহার করবেন না কেননা এসব ঔষধের বিভিন্ন ধরন ও ডোজ থাকে যার মধ্যে অনেকগুলো গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ নয় তা ছাড়া স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ প্রয়োজনের চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে এবং অতিরিক্ত ডোজে ব্যবহার করলে সেটি আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে[১৪] গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরই চোখে অস্পষ্ট বা ঝাপসা দেখার সমস্যা হয় এ সমস্যাটি একদম প্রসব পর্যন্ত ভোগাতে পারে গর্ভাবস্থার অন্যান্য সমস্যাগুলো নিয়ে মায়েদের কিছুটা ধারণা থাকে কিন্তু চোখের এ সমস্যাটি নিয়ে অনেক মাই তেমন জানেন নাগর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরই চোখে অস্পষ্ট বা ঝাপসা দেখার সমস্যা হয় এ সমস্যাটি একদম প্রসব পর্যন্ত ভোগাতে পারে গর্ভাবস্থার অন্যান্য সমস্যাগুলো নিয়ে মায়েদের কিছুটা ধারণা থাকে কিন্তু চোখের এ সমস্যাটি নিয়ে অনেক মাই তেমন জানেন নাআবার গর্ভাবস্থায় চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা প্রিএক্লাম্পসিয়া ও মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস এর মতো জটিলতার কারণেও হতে পারে আগে থেকেই জেনে রাখলে গর্ভাবস্থায় এসব জটিলতা এড়িয়ে চলা যায় গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের পরিবর্তনের সাথে সাথে চোখেরও কিছু পরিবর্তন হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব পরিবর্তন স্বাভাবিক এবং প্রসবের পর পর আপনাআপনি সেরে যায় গর্ভাবস্থায় যেসব সাধারণ কারণে মায়েরা চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন সেগুলো হলো—হরমোনের পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায় এর মধ্যে প্রোজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে চোখের কর্নিয়ায় ফ্লুইড শিফট হতে পারে অর্থাৎ কর্নিয়ার পেছনে থাকা তরল বেরিয়ে আসতে পারে আর এই ফ্লুইড শিফটের কারণেই চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা দেখা দিতে পারেএকই কারণে গর্ভাবস্থায় চোখের অভ্যন্তরীণ প্রেশারও স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কমে যেতে পারে চোখের পানির পরিমাণ কমে যাওয়া আমাদের চোখে থাকা ল্যাক্রিমাল গ্রন্থি থেকে চোখের পানি তৈরি হয় গর্ভাবস্থায় এই গ্রন্থি থেকে চোখের পানি তৈরির হার কমে গেলে আপনার অস্বস্তি হতে পারে চোখ শুকিয়েও যেতে পারে এর ফলে আপনি চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন কর্নিয়া পুরু হয়ে যাওয়া গর্ভাবস্থার শেষের দিকে হরমোনের কারণে শরীরে ফ্লুইড বা তরলের পরিমাণ বেড়ে যায় চোখের কর্নিয়ায় অতিরিক্ত তরল জমে আপনার চোখের কর্নিয়া পুরু হয়ে যেতে পারেপ্রায় ১৪ শতাংশ মায়ের এ সমস্যা হতে পারেএ থেকে ঝাপসা দেখার সমস্যাও হয়ে থাকে দৃষ্টি ক্ষেত্রের পরিবর্তন আমাদের মস্তিষ্কের একটি গ্রন্থি হলো পিটুইটারি গ্রন্থি গর্ভাবস্থায় এই গ্রন্থি আকারে বৃদ্ধি পায়পিটুইটারি গ্রন্থির বৃদ্ধির ফলে আগে থেকে কারও পিটুইটারি অ্যাডেনোমা জাতীয় অক্ষতিকর টিউমার থাকলে সেটি এসময় আকারে আরও বাড়তে পারে যার ফলে গর্ভবতী মায়েদের দৃষ্টির সীমা পরিবর্তিত হতে পারে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসতে পারে ও মাথাব্যথাসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় কারও এ জাতীয় লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে তবে এটি সাধারণত খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নয় কারণ এ ধরণের টিউমার বা বৃদ্ধি সাধারণত প্রসবের পর নিজে থেকেই কমে আসে ফলে প্রসবের পর সাধারণত দৃষ্টিশক্তি পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে গর্ভাবস্থায় আপনার উচ্চ রক্তচাপ উচ্চ ব্লাড গ্লুকোজ থাকলে এবং এসবের পাশাপাশি চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা হলে সেটি গর্ভাবস্থার বিভিন্ন জটিলতা নির্দেশ করে এসব ক্ষেত্রে যেকোনো পরিবর্তন নিয়েই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন গর্ভাবস্থায় দৃষ্টি ঝাপসা হওয়ার কারণ হতে পারে এমন দুটি জটিলতা হলো—প্রিএক্লাম্পসিয়াপ্রিএক্লাম্পসিয়া একটি উচ্চ রক্তচাপ জনিত জটিলতা এর একটি লক্ষণ হলো চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টি ঘোলা হয়ে যাওয়া বা চোখের সামনে আলোর ঝলকের মতো দেখতে পাওয়াআপনার চোখে ঝাপসা দেখার সাথে নিচের লক্ষণগুলো দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন—প্রচণ্ড মাথাব্যথা যা সাধারণ পেইনকিলার সেবনেও যায় না প্রচণ্ড বুক জ্বালাপোড়া যা এন্টাসিড খেলে সারে না পাঁজরের হাড়ের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথা খুব খারাপ বা অসুস্থ অনুভব করা শরীরের বিভিন্ন জায়গা (যেমন পায়ের পাতা গোড়ালি মুখ ও হাত) হঠাৎ পানি জমে ফুলে উঠতে থাকাআপনার আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ থাকলে আপনার প্রিএক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে এক্ষেত্রে নিচের সহজ উপায়গুলো অবলম্বন করে প্রিএক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি এড়িয়ে চলুন—গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ সেবন করুন উচ্চ রক্তচাপ জনিত জটিলতা এড়িয়ে চলতে নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করানতবে প্রিএক্লাম্পসিয়ার কারণে বেশি জটিল অবস্থার সৃষ্টি হলে এসময় চিকিৎসক আপনার প্রসবের সূত্রপাত করাতে পারেন অথবা প্রয়োজনে সরাসরি সিজারিয়ান সেকশন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনমাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিসমাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস গর্ভাবস্থার একটি পরিচিত সমস্যা মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস থাকাকালীন চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা শরীরের গ্লুকোজ এর মাত্রা বেড়ে গেছে এমনটা নির্দেশ করেমাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস এর জটিলতা থেকে চোখের রেটিনার রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এর ফলে চিরদিনের জন্য দৃষ্টি হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে তাই আপনার গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে প্রতি ত্রৈমাসিকে চোখের রক্তনালী পরীক্ষা করানএর পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলোর দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন—তীব্রভাবে ঝাপসা দেখা ডাবল ভিশন বা যেকোনো কিছুকে দুটি করে দেখা সাময়িকভাবে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলা আপনার গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলার মাধ্যমে আপনি অনেকটা স্বস্তিতে থাকতে পারেন—প্রক্রিয়াজাত খাবার অধিক চর্বি ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন প্রোটিন ফ্যাট কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ সুষম খাবার খান নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন আপনার অতিরিক্ত গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসক আপনাকে ইনসুলিন দিলে সেটি নিয়মিত নিনঅন্যান্য জটিলতাআপনার যদি আগে থেকেই নিচের রোগগুলো থাকে সেক্ষেত্রে চোখের ঝাপসা দেখার সমস্যা এ রোগগুলোর আরও খারাপ হয়ে যাওয়া বুঝায়—ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি[১৪] গ্রেভস ডিজিজ ইডিওপ্যাথিক ইন্ট্রাক্র্যানিয়াল হাইপারটেনশন মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস বিভিন্ন টিউমার যেমন পিটুইটারি এডেনোমা ইউভাইটিস তাই আগে থেকে এসব রোগ থাকলে এবং গর্ভাবস্থায় চোখে ঝাপসা দেখতে পেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক কারণে চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যার জন্য আপনার তেমন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই তবে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চললে আপনি চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা অনেকটা এড়িয়ে চলতে পারেন১ চোখকে বিশ্রাম দিনআপনি সারাদিন কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে আপনার চোখের ক্লান্তি থেকে ঝাপসা দেখবেন দীর্ঘ সময় ধরে স্ক্রিনে কাজ করলে চোখের বিরতি নিন এক্ষেত্রে প্রতি ২০ মিনিট পর পর আপনার থেকে ২০ ফুট দূরে থাকা কোনো বস্তুর দিকে ২০ সেকেন্ড ধরে তাকিয়ে থাকুন এ ছাড়াও স্ক্রিন গ্লাস এন্টি গ্লেয়ার স্ক্রিন—এসব ব্যবহার করতে পারেন স্ক্রিন চোখের লেভেল থেকে নিচে আর দুই ফিট দূরে রাখুন ২ চোখের ড্রপ ব্যবহার করুন আপনার চোখের পানি শুকিয়ে যাবার কারণে চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা হলে চিকিৎসক আপনাকে গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন ড্রপ দিতে পারেন আর্টিফিশিয়াল টিয়ার নামে পরিচিত এসব ড্রপ ব্যবহারের আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে৩ লেন্সের ব্যবহার এড়িয়ে চলুনঅনেক মা চোখের সমস্যার জন্য আগে থেকেই কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারেন গর্ভাবস্থায় এসব কন্টাক্ট লেন্স চোখের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে বিশেষ করে আপনার যদি চোখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা থাকে গর্ভাবস্থায় কন্টাক্ট লেন্স এর ব্যবহার এড়িয়ে চলুন লেন্স এর পরিবর্তে চশমা ব্যবহার করুন৪ চশমার পাওয়ার পরিবর্তন থেকে বিরত থাকুনঅনেক মা যারা আগে থেকেই চশমা পরেন তাদের গর্ভাবস্থায় চশমার পাওয়ার এর পরিবর্তন হতে পারে এসব পরিবর্তন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাময়িক এক্ষেত্রে চশমার পাওয়ার পরিবর্তন থেকে বিরত থাকুন গর্ভাবস্থায় শরীরের পরিবর্তনের কারণে হওয়া চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা প্রসবের পর থেকেই সেরে ওঠা শুরু করেযদি প্রসবের পরও দীর্ঘদিন আপনার সমস্যাটি থাকে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন তবে চোখের যেকোনো পরিবর্তনের জন্য অন্তত ৬৯ মাস অপেক্ষা করা উচিত কেননা প্রসবের পর এসব সমস্যা সেরে উঠতে কিছুটা সময় লাগে জ্বর আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার এক ধরনের প্রতিক্রিয়া সাধারণত কোনো রোগ বা ইনফেকশন হলে তার লক্ষণ হিসেবে আমাদের জ্বর আসে অন্যান্য সময়ের মতো গর্ভাবস্থাতেও জ্বর আসতে পারেজ্বর আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার এক ধরনের প্রতিক্রিয়া সাধারণত কোনো রোগ বা ইনফেকশন হলে তার লক্ষণ হিসেবে আমাদের জ্বর আসে অন্যান্য সময়ের মতো গর্ভাবস্থাতেও জ্বর আসতে পারেগর্ভাবস্থায় জ্বর বা অতিরিক্ত তাপমাত্রা গর্ভের শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এসময়ে ঘাবড়ে না গিয়ে জ্বর কমানোর ব্যবস্থা করা এবং দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ গর্ভাবস্থায় জ্বর না আসলেও অনেকের গা গরম লাগতে পারে গর্ভকালীন হরমোনগুলোর প্রভাবে এবং রক্ত প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে এমন হয় একারণে জ্বর এসেছে কি না সেটা বুঝে ওঠা কঠিন হতে পারে তাই জ্বর এসেছে মনে হলে অথবা শরীর খারাপ লাগলে থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখুনজ্বর আসলে আপনার—গা গরম লাগতে পারে শরীরে কাঁপুনি হতে পারে হঠাৎ শীত শীত লাগতে পারে ঠান্ডা লাগার কিছুক্ষণ পর আবার গরম লাগতে পারে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘাম হতে পারে উজ্জ্বল বর্ণের হলে ত্বক লালচে দেখাতে পারে শরীর দুর্বল লাগতে পারেএ ছাড়া শরীরের কোথাও কোনো ইনফেকশন হলে সেই অনুযায়ী বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারেজ্বর মাপার পদ্ধতিথার্মোমিটারে তাপমাত্রা ১০০৪° ফারেনহাইট বা ৩৮° সেলসিয়াস কিংবা তার বেশি দেখালে ধরে নেওয়া হয় জ্বর হয়েছেতবে জ্বরের ঔষধ (যেমন প্যারাসিটামল) খাওয়ার পরে তাপমাত্রা মাপলে সঠিক ফলাফল আসার সম্ভাবনা কমে যায়জ্বর মাপার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হলো থার্মোমিটারের সাহায্যে জ্বর মেপে দেখা হাতের কাছে থার্মোমিটার না থাকলে বুকে অথবা পিঠে হাত দিয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কি না সেটা বোঝার চেষ্টা করুন তাপমাত্রা বেশি মনে হলে অথবা শরীরে কাঁপুনি ওঠার মতো লক্ষণ থাকলে সেটাকে জ্বর ধরে নিয়েই পরবর্তী পদক্ষেপ নিনআমরা সাধারণত কপালে হাত দিয়ে জ্বর এসেছে কি না সেটা বোঝার চেষ্টা করি কিন্তু জ্বর মাপার এই পদ্ধতিটি নির্ভরযোগ্য নয় গর্ভাবস্থায় জ্বর আসলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন যেহেতু শরীরে কোনো রোগ বা ইনফেকশন বাসা বাঁধার কারণে জ্বর হতে পারে তাই মূল কারণ খুঁজে বের করে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণজ্বর আসার কতক্ষণের মধ্যে ডাক্তার দেখাবেন[২]যদি তাপমাত্রা ১০২° ফারেনহাইট/৩৮৯° সেলসিয়াস বা এর বেশি হয় তাহলে দেরি না করে ডাক্তার দেখান যদি তাপমাত্রা ১০২° ফারেনহাইট/৩৮৯° সেলসিয়াস এর কম হয় এবং ১ দিনের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকে তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডাক্তারের পরামর্শ নিনঅনেকসময় জ্বর নিজে নিজেই চলে যেতে পারে তারপরেও ডাক্তারের কাছে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত শরীরে কোনো ইনফেকশন থাকলে ডাক্তার প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক অথবা অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনজ্বর উপশমে ঘরোয়া চিকিৎসাঘরোয়া কিছু পরামর্শ আপনাকে জ্বর উপশমে সাহায্য করতে পারে জ্বর পুরোপুরি সারাতে এসবের পাশাপাশি যে রোগের কারণে জ্বর এসেছে সেটিরও সঠিক চিকিৎসা নিতে হবেজ্বর কমাতে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন—পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন সম্ভব হলে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে বিশ্রাম নিন প্রচুর পানি ও তরল খাবার খান এটি পানিশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করবে এমন পরিমাণে পানি পান করবেন যেন প্রস্রাব স্বচ্ছ ও হালকা হলুদ হয় পাতলা ও ঢিলেঢালা কাপড় পড়ুন এতে করে আপনার শরীরে বাতাস চলাচল করবে যদি ঠান্ডা লাগে বা কাঁপুনি আসে তাহলে পাতলা চাদর গায়ে জড়াতে পারেন রোদ ও গরম আবহাওয়া থেকে যথাসম্ভব দূরে একটা ঠান্ডা ও আরামদায়ক ঘরে থাকুন জানালা খুলে দিয়ে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন ফ্যান হালকা করে ছেড়ে দিন যদি সম্ভব হয় হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন তবে বেশি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল না করাই ভালো এতে কাঁপুনি হয়ে জ্বর আরও বেড়ে যেতে পারে এক টুকরা পরিষ্কার কাপড় পানিতে ভেজানোর পর সেটা চিপে কপালে দিতে পারেন একে অনেকে জলপট্টি বলেন চাইলে পুরো শরীর বিশেষ করে ঘাড় বুক ও বগল জলপট্টি দিয়ে মুছে নিতে পারেন জ্বরের সময়ে এভাবে গা মুছিয়ে দিলে অনেকে আরাম পান নিজে জলপট্টি দিতে কষ্ট হলে পরিবারের অন্য কারও সাহায্য নিতে পারেনসাধারণ অবস্থায় একজন গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ অথবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে কমপক্ষে ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে যদি ডাক্তার বিশেষ কোনো পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেনঔষধগর্ভাবস্থায় জ্বরের জন্য উপযুক্ত ঔষধ হলো প্যারাসিটামল এটি জ্বর ও জ্বরের কারণে হওয়া অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করেপ্যারাসিটামল একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ চেষ্টা করবেন আপনার জন্য ন্যূনতম যেই ডোজে কাজ হয় সেই ডোজটি বেছে নিতে এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কিংবা আগে থেকে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিতে পারেনউল্লেখ্য প্যারাসিটামল কেনার সময়ে সাথে ক্যাফেইন কোডেইন অথবা অন্য কোনো উপাদান যোগ করা আছে কি না সেটা দেখে নিন অনেকসময় এই ধরনের ঔষধের ক্ষেত্রে নামের আগেপরে এক্সট্রা শব্দটা যোগ করা থাকে গর্ভাবস্থায় এই জাতীয় ঔষধের পরিবর্তে সাধারণ প্যারাসিটামল বেছে নেওয়া উচিতগর্ভাবস্থায় জ্বর কমাতে যে ধরনের ঔষধ সেবন করা যাবে না কিছু ঔষধ সাধারণ সময়ে জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হলেও গর্ভাবস্থায় সেগুলো এড়িয়ে চলবেন যেমন আইবুপ্রোফেন ও অ্যাসপিরিন এগুলো ব্যথার ঔষধ বা ননস্টেরয়ডাল প্রদাহনাশক হিসেবে পরিচিত গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে— গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে এ ধরনের ঔষধ সেবনের ফলে গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটি হতে পারে এমনকি গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহ বা তারপরে এই ঔষধ সেবন করলে আপনার অনাগত শিশুর কিডনিতে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে এ ছাড়া গর্ভের শিশুর হার্টের সমস্যা হতে পারে এমনকি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে মায়ের আইবুপ্রোফেন সেবন করার সাথে শিশুর জন্মের পরে (১৮ মাস বয়সে) হাঁপানি বা অ্যাজমা হওয়ার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে তাই ডাক্তারের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ছাড়া গর্ভাবস্থায় এই জাতীয় ঔষধ সেবন করবেন না সাধারণ কারণসাধারণ সময়ে যেসব কারণে জ্বর আসে গর্ভাবস্থাতেও সেই কারণগুলোতে আপনার জ্বর আসতে পারে এর মধ্যে অন্যতম হলো বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন যেমন—১ প্রস্রাবের ইনফেকশন গর্ভাবস্থায় জ্বর আসার অন্যতম কারণ হলো প্রস্রাবের ইনফেকশন[৭] প্রস্রাবের ইনফেকশন হলে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াসহ কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা দিতে পারেগর্ভাবস্থায় নারীদের প্রস্রাবের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়[৮] সঠিক চিকিৎসা না করলে এটি কিডনির ইনফেকশনসহ বিভিন্ন গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে হতে পারে ফলে প্রসব সংক্রান্ত জটিলতা বাড়তে পারে[৯]২ পেটের অসুখ ফুড পয়জনিং কিংবা এ জাতীয় পেটের অসুখ থেকেও আপনার গর্ভাবস্থায় জ্বর আসতে পারে এক্ষেত্রে সাধারণত জ্বরের পাশাপাশি বমি পাতলা পায়খানা ও পেট কামড়ানোর মতো লক্ষণ দেখা দেয়৩ সাধারণ সর্দিজ্বর এটি সাধারণত ভাইরাল ইনফেকশনের কারণে হয় এবং খুব একটা গুরুতর হয় না এতে হালকা জ্বরের সাথে সর্দি ও গলা ব্যথা থাকতে পারে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি নিজ থেকেই ভালো হয়ে যায়৪ ফ্লু ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে হঠাৎ করেই তীব্র জ্বর আসতে পারে এর পাশাপাশি গায়ে কাঁপুনি ও কাশির মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে কখনো কখনো গায়ে ব্যথাও থাকতে পারে গর্ভবতী মা ও তাদের শিশুদের ফ্লু জনিত জটিলতায় ভোগার ঝুঁকি বেশি[১০] তাই এসময়ে ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবেপড়ুন ফ্লু না কি সাধারণ সর্দি হয়েছে তা বোঝার উপায়৫ কোভিড১৯ করোনা হলেও গর্ভাবস্থায় জ্বর আসতে পারে জ্বরের সাথে গলাব্যথা কাশি অস্বাভাবিক স্বাদগন্ধ পাওয়া কিংবা স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলার মতো উপসর্গ দেখা দিলে তা কোভিডের লক্ষণ হতে পারে এমন ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন সম্ভব হলে করোনা পরীক্ষা করিয়ে ফেলুন ওপরের কারণগুলোর পাশাপাশি নিউমোনিয়া ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া টাইফয়েড যক্ষ্মা ও হেপাটাইটিসের মতো ইনফেকশনের কারণে গর্ভাবস্থায় জ্বর আসতে পারেবিশেষ কারণ১ কোরিওঅ্যামনিওনাইটিস গর্ভাবস্থায় আপনার গর্ভের শিশুকে কিছু আবরণ বা পর্দা ঘিরে রাখে এমন দুটি পর্দা হলো কোরিওন ও অ্যামনিওন এই দুটি পর্দায় প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া হলে তাকে ডাক্তারি ভাষায় কোরিওঅ্যামনিওনাইটিস বলা হয়মূলত কোনো কারণে গর্ভথলি ছিঁড়ে গেলে যোনিপথে থাকা জীবাণু এই পর্দাগুলোতে ইনফেকশন ঘটায় তখন এই সমস্যা দেখা দেয় এসময় জ্বর আসে জ্বরের পাশাপাশি সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়[১১]—পেটে ব্যথা তলপেটের নিচের দিকে চাপ দিলে ব্যথা পাওয়া যোনিপথে ঘন দুর্গন্ধযুক্ত তরল বেরিয়ে আসা হার্টবিট বেড়ে যাওয়া হার্টবিট বেড়ে গেলে আপনার বুক ধড়ফড় করতে পারে এ ছাড়া শরীরে কাঁপুনি ও ঘাম হতে পারে২ গর্ভপাতজনিত ইনফেকশন জরায়ুতে জীবাণু সংক্রমণের কারণে গর্ভপাত হলে কিংবা গর্ভপাত করাতে গিয়ে জরায়ুতে জীবাণু সংক্রমিত হলে তাকে ডাক্তারি ভাষায় সেপটিক অ্যাবরশন বলে সাধারণত প্রথম ত্রৈমাসিকে এই সমস্যা হয়ে থাকে এক্ষেত্রে সাধারণত গায়ে কাঁপুনি দিয়ে তীব্র জ্বর আসতে পারে জ্বরের পাশাপাশি সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়[১২]—তীব্র পেট ব্যথা তলপেটে চাপ দিলে ব্যথা যোনিপথে ঘন দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব অথবা রক্ত যাওয়া৩ লিস্টেরিয়া ইনফেকশন দূষিত খাবার ও পানি থেকে গর্ভাবস্থায় লিস্টেরিয়া নামক ইনফেকশন হতে পারে এই রোগটি বিরল হলেও সাধারণ মানুষের তুলনায় গর্ভবতীদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১০ গুণ বেশি[১৩] এটি পানিশূন্যতা গর্ভপাত মৃত শিশু প্রসব ও অকাল প্রসবের মতো মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এই রোগে জ্বরের পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলো থাকতে পারে—গায়ে কাঁপুনি দেওয়া মাংসপেশির ব্যথা বমি বমি ভাব ডায়রিয়া ঘাড় ব্যথা মাথা ব্যথা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা বিভ্রান্তি গর্ভাবস্থায় মূলত বিভিন্ন ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে পারলে আপনি জ্বর আসার ঝুঁকি কমাতে পারবেন গর্ভকালীন সময়ে ইনফেকশন বা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য নিচের নিয়মগুলো মেনে চলুন—১ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন গর্ভাবস্থায় পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা মেনে চলা বিশেষভাবে জরুরি এসময়ে বার বার সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিবেনযেসব ক্ষেত্রে হাত ধুতেই হবে[১৫]—খাবার তৈরি এবং খাওয়ার আগে ও পরে টয়লেট ব্যবহারের পরে শিশুর যত্ন নেওয়া তার সাথে খেলা করা ও ডায়পার পাল্টানোর পরে কাঁচা মাছ মাংস ডিম ও বাইরে থেকে আনা শাকসবজি ধরলে পোষা প্রাণী ধরলে বাগান করার কিংবা মাটি বা ময়লা ছুঁলে হাতে লালা বা থুথু লাগলে অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলে অন্যদের ব্যবহার্য কিছু ধরলে যেমন দরজার হাতল লিফটের বাটন ও টাকাপড়ুন গর্ভাবস্থায় ইনফেকশন প্রতিরোধের উপায়২ ভিড় ও অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন গর্ভাবস্থায় আপনার রোগ সংক্রমণের ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় এসময় যেকোনো ধরনের অসুস্থ ব্যক্তির সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুন ভিড় ও জনসমাগম পূর্ণ জায়গায় যাওয়া থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকুন প্রয়োজনে মাস্ক পড়ুন বারবার হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন৩ খাবারের ব্যাপারে সতর্ক হোন খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু নিয়ম মেনে চলুন—জ্বরের কারণে আপনার গর্ভের শিশুর ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা হতে পারে ডাক্তারি ভাষায় একে নিউরাল টিউব ডিফেক্ট বলে ফলিক এসিড এই জটিলতা প্রতিরোধে সাহায্য করে[১৬] তাই গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফলিক এসিড সমৃদ্ধ খাবার খান এর পাশাপাশি ফলিক এসিড ট্যাবলেট অথবা ক্যাপসুল সেবন করুনপড়ুন গর্ভাবস্থায় ফলিক এসিডের ডোজকাঁচা বা অর্ধ সিদ্ধ খাবার থেকে বিভিন্ন রোগজীবাণু ছড়াতে পারে এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে— গরু ছাগল ও ভেড়ার অপাস্তুরিত দুধ অপাস্তুরিত দুধ দিয়ে তৈরি সব ধরনের খাবার কাঁচা অথবা ভালোভাবে সিদ্ধ না হওয়া মাছ মাংস ডিম ও দুধ কলিজা ও কলিজা দিয়ে তৈরি যেকোনো খাবার কাঁচা অথবা অর্ধসিদ্ধ সামুদ্রিক মাছ দিয়ে তৈরি খাবার যেমন সুশি ভালোভাবে সিদ্ধ না হওয়া ফ্রোজেন বা প্রক্রিয়াজাত মাংস যেমন সসেজ সালামি ও পেপারনি তাই গর্ভাবস্থায় যেকোনো খাবার ভালো করে সিদ্ধ করে খাবেন দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারের ক্ষেত্রে আগুনে ফুটানো অথবা পাস্তুরিত পণ্য বেছে নিবেন[১৭]৪ টিকা নিন গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শে টিকা নিন টিকা বিভিন্ন ইনফেকশন প্রতিরোধ করার মাধ্যমে আপনাকে ও গর্ভের শিশুকে নানান মারাত্মক জটিলতা থেকে রক্ষা করবেগর্ভবতী মা ও ভবিষ্যৎ নবজাতককে মারাত্মক টিটেনাস রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে টিডি টিকা দেওয়া হয় এই টিকায় ডিপথেরিয়া প্রতিরোধেও সহায়তা করেসরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হয় সাধারণত গর্ভকালীন ৪র্থ ও ৮ম মাসে কিংবা ৫ম মাসের পর ৪ সপ্তাহ বিরতিতে দুই ডোজ টিকা দেওয়া হয় এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনইতোমধ্যে করোনা টিকা দেওয়া না থাকলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে করোনা টিকা নিন বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ইউনিসেফ ও যুক্তরাষ্ট্রের গর্ভবতী ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ প্রতিষ্ঠান (এসিওজি)সহ বিশেষজ্ঞদের মতে গর্ভাবস্থায় করোনা টিকা নেওয়া নিরাপদ[১৮][১৯][২০] এ ছাড়া ডাক্তারের সাথে কথা বলে প্রয়োজন অনুযায়ী নিচের টিকাগুলো নিতে পারেন— ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন হুপিং কাশি বা পারটাসিস ভ্যাকসিন হেপাটাইটিস বি ভ্যাকসিন হেপাটাইটিস এ ভ্যাকসিন নিউমোকক্কাল ভ্যাকসিন হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা ভ্যাকসিন ও মেনিঙ্গোকক্কাল (B ও ACWY) ভ্যাকসিন বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে তা মা ও গর্ভের শিশু উভয়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে—কিছু গবেষণা থেকে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে তা গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে[২১] অবশ্য সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় গর্ভাবস্থার ১৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত জ্বর হওয়ার সাথে গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি[২২] এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে জ্বর আসার সাথে গর্ভের শিশুর কিছু জন্মগত ত্রুটির সম্পর্ক কিছুটা বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে[২৩][২৪] এসব ত্রুটির মধ্যে রয়েছে হার্টের রোগ ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা ঠোঁট কাটা মুখের তালু কাটা ও নাড়িভুঁড়ির সমস্যা[২৫] গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে জ্বর হলে এটি জন্মের পরে শিশুকে অমনোযোগিতার ঝুঁকিতে ফেলতে পারে[২৬] গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বা ১২তম সপ্তাহের পর জ্বর আসলে গর্ভের শিশুর অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে[২৭] গর্ভাবস্থার এই সময়ের পর তিনবার বা তার বেশি জ্বর আসলে এই ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যেতে পারেসব গবেষণায় গর্ভাবস্থায় জ্বরের সাথে এসব জটিলতার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি[২৮] এ বিষয়ে আরও গবেষণার অবকাশ রয়েছে যেকোনো ক্ষেত্রেই জ্বর আসলে তা কমানোর ব্যবস্থা করা ও সময়মতো ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি গর্ভাবস্থায় ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা খুব কমন সমস্যা না হলেও গর্ভবতীরা এই সমস্যাটিরও সম্মুখীন হতে পারেন আর দশ জনের যেসব কারণে পাতলা পায়খানা হয় গর্ভবতী নারীরও একই কারণে পাতলা পায়খানা হতে পারেগর্ভাবস্থায় ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা খুব কমন সমস্যা না হলেও গর্ভবতীরা এই সমস্যাটিরও সম্মুখীন হতে পারেন আর দশ জনের যেসব কারণে পাতলা পায়খানা হয় গর্ভবতী নারীরও একই কারণে পাতলা পায়খানা হতে পারেসেই সাথে গর্ভাবস্থার বিশেষ কিছু বিষয়ও ডায়রিয়া হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে তবে বেশি বেশি পানি খেয়ে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পারলে সাধারণত ডায়রিয়া গুরুতর কোনো সমস্যা তৈরি করে নাডায়রিয়া বলতে ঘন ঘন—দিনে তিন বার বা তার বেশি—পাতলা পায়খানা হওয়া বোঝায়[১][২] পায়খানা স্বাভাবিক পায়খানার চেয়ে কিছুটা নরম হতে পারে আবার একেবারে তরলও হতে পারে সেই সাথে আপনার পেটে ফোলা ফোলা ভাব বমি বমি ভাব ও পেটে ব্যথা থাকতে পারে পেট মোচর দিচ্ছে বলে মনে হতে পারে ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়ার তাগিদ থাকতে পারে সাধারণ সময়ে যে সকল কারণে পাতলা পায়খানা হয় সেগুলো গর্ভাবস্থাতেও ডায়রিয়া ঘটাতে পারে যেমন—খাদ্যে বিষক্রিয়া বা ফুড পয়জনিং ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত পরিপাকতন্ত্রের অন্য কোনো রোগ ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে ডায়রিয়া হতে পারে দূরে যাতায়াত ও যাত্রাপথে খাদ্যাভ্যাসে গড়বড় হলে ট্রাভেলারস ডায়রিয়া হতে পারে ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট অর্থাৎ দুগ্ধজাতীয় খাবার হজমে যাদের সমস্যা হয় তারা দুধ বা দুধের তৈরি কোনো খাবার খেলে ডায়রিয়া হতে পারে[৭][৮] ক্যাফেইন অর্থাৎ চাকফি জাতীয় পানীয় সেবনে অনেকের ডায়রিয়া হতে পারে বা ডায়রিয়ার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে[৯] অন্যান্য কিছু শারীরিক সমস্যা ডায়রিয়ার জন্য দায়ী হতে পারে যেমন ক্রোন্স ডিজিজ সিলিয়াক ডিজিজ আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম হাইপারথাইরয়েডিজম তবে গর্ভাবস্থায় পাতলা পায়খানা হওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো ছাড়াও আরও কিছু বিশেষ বিষয়ের ভূমিকা থাকতে পারে যেগুলো গর্ভাবস্থার সাথেই সম্পৃক্ত যেমন—শারীরিক পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে থাকে এসময় আপনার বাড়ন্ত জরায়ু আপনার পেটের ওপর চাপ সৃষ্টি করে গর্ভাবস্থায় পরিপাক নালীর ভেতরে খাবারের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হতে পারে এর ফলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন বুক জ্বালাপোড়া বমি বমি ভাব ও বমি পেটের অস্বস্তি কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা ডায়রিয়া খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন গর্ভবতী হওয়ার পর দেখা যায় মায়েরা কী খাচ্ছেন না খাচ্ছেন—তা নিয়ে সচেতন হয়ে যান অনেকে হঠাৎ করে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থেকে পুষ্টিকর আঁশযুক্ত খাদ্যাভ্যাসে সরে আসেন হঠাৎ এমন পরিবর্তনে মানিয়ে নেওয়া আপনার পরিপাকতন্ত্রের জন্য কঠিন হতে পারে এবং আপনার ডায়রিয়া অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে গর্ভাবস্থায় ভিটামিন ও মিনারেলের ট্যাবলেট গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি সঠিক মাত্রায় নিশ্চিত করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন ট্যাবলেট দেওয়া হয় যেমন ফলিক এসিড আয়রন জিংক এসব ট্যাবলেট আপনার সন্তানের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তবে এগুলো শরীরে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারেগর্ভাবস্থার ভিটামিন ট্যাবলেট সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে বমি বমি ভাব বমি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তবে কিছু ক্ষেত্রে এর পাশাপাশি ডায়রিয়াও দেখা দিতে পারে অনেকসময় অল্প মাত্রার ডায়রিয়া দুই একদিনের মতো সময় দিলে নিজেই সেরে যায় তবে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বুক জ্বালাপোড়ার মতো পাতলা পায়খানাও শুধু একটি অস্বস্তিকর উপসর্গ হতে পারেগর্ভাবস্থায় ডায়রিয়ার ঘরোয়া চিকিৎসায় যেসব নিয়ম মেনে চলতে পারেন——১ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়াডায়রিয়া হলে পায়খানার সাথে বিপুল পরিমাণ পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায় শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই বের হয়ে যাওয়া পানি পুনরায় পূরণ করার জন্য বেশি করে পানি পান করতে হবেপানির সাথে বিভিন্ন তরল খাবারও (যেমন স্যুপ অথবা জুস) খাওয়া যেতে পারে তবে চা কফি কিংবা দুধ ও দুধের তৈরি খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন এগুলো ডায়রিয়া বাড়িয়ে দিতে পারে[১৬]২ সহজে হজম করা যায় এমন খাবার খাওয়াযেসব খাবার সহজেই হজম হয়ে যায় সেগুলো খেলে আপনার পরিপাকতন্ত্রে বাড়তি কোনো চাপ পড়বে না এসব খাবারের মাঝে রয়েছে—কাচঁকলা সাদা ভাত টোস্ট বিস্কুট সিদ্ধ আলু মুরগি বা সবজির স্যুপ—এগুলো বাজারে প্যাকেট আকারে পাওয়া যায় যা সহজে শুধুমাত্র গরম পানি দিয়েই তৈরি করে নেওয়া সম্ভবপেট খারাপ হলে অনেকে খাবারের তালিকায় কেবল সাদা ভাত কিংবা জাউ ভাত রাখে এর পরিবর্তে ভাতের সাথে সিদ্ধ অথবা রান্না করা কাঁচকলা মিশিয়ে খেতে পারেন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কাঁচকলা পাতলা পায়খানা ও বমি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে[১৭]ডায়রিয়া অথবা বমি হলে শরীর থেকে পানি ও অন্যান্য লবণের সাথে পটাশিয়ামও বেরিয়ে যায় পাকা কলায় প্রচুর পটাশিয়াম থাকে এটি হজম করাও সহজ একারণে পটাশিয়াম এর অভাব পূরণ করতে পাকা কলাও খেতে পারেনখেয়াল করুন ডায়রিয়া হলে পাতলা পায়খানা কমানোর যেসব খাবার খাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয় সেগুলো বেশি খাওয়া হয়ে গেলে আবার কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে তাই পরিমিত ভাবে এসব খাবার খেতে হবে এবং সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে পাশাপাশি শরীরকে সক্রিয় রাখতে হবেএকই সাথে কিছু খাবার সতর্কভাবে এড়িয়ে চলতে হবে যেমন—দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার অতিরিক্ত ঝাল খাবার তৈলাক্ত খাবার ভাজাপোড়া খাবারপাতলা পায়খানা হলে খাবার দাবার কেমন হওয়া উচিৎ তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে পেটের গণ্ডগোল হলে যা খাবেন আর্টিকেলটি পড়ুন৩ খাবার স্যালাইনসাধারণত প্রতিবার পাতলা পায়খানা হওয়ার পর এক প্যাকেট ওরস্যালাইন আধা লিটার পানিতে গুলিয়ে খাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয় বাসায় খাবার স্যালাইনের প্যাকেট না থাকলেও ঘরোয়া উপায়ে খাবার স্যালাইন তৈরি করে নিতে পারেনএ ছাড়া চিড়ার পানি ভাতের মাড় কিংবা ডাবের পানিও খাওয়া যেতে পারে ভাতের মাড়ে সামান্য লবণ দিতে পারেন বমি ভাব হলে স্যালাইন ছোটো ছোটো চুমুকে খাওয়ার চেষ্টা করবেন[১৮]৪ পরিছন্নতা বজায় রাখাপাতলা পায়খানা হলে আপনার পরিপাকতন্ত্র থেকে জীবাণু সহজে প্রস্রাবের রাস্তায় যেয়ে ইনফেকশন করার আশংকা থাকে তাই পাতলা পায়খানা হলে পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি প্রতিবার পায়খানার পর পানি দিয়ে সামনে থেকে পেছনের দিকে ভালো মতো ধুয়ে নিবেন বাথরুম থেকে বের হওয়ার আগে সাবান অথবা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে নিবেনগর্ভাবস্থায় ডায়রিয়ার জন্য ঔষধসাধারণত গর্ভাবস্থায় ডায়রিয়ার জন্য কোনো ঔষধ ব্যবহার করা হয় না খাবার স্যালাইন পানি ও তরল খাবার দিয়ে পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করাই এর চিকিৎসা সাধারণত ডায়রিয়া স্বল্প মাত্রায় হয়ে অল্প সময়ের মাঝে নিজে নিজে সেরে যায় তবে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে—ডায়রিয়া দুইদিনের বেশি সময় স্থায়ী হলে ২৪ ঘন্টায় ৬ বার কিংবা তার চেয়ে বেশি পাতলা পায়খানা হলে পেটে প্রসবের টানের মতো টান অনুভূত হয় গর্ভের সন্তানের নড়াচড়া কমে যায় তাপমাত্রা ১০২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দেয় বারবার বমি হতে থাকে পায়খানার সাথে লাল রক্ত গেলে কিংবা আলকাতরার মতো কালো আঠালো পায়খানা হলে পায়খানার সাথে পুঁজ গেলে তলপেটে কিংবা পায়খানার রাস্তায় যদি প্রচণ্ড ব্যথা হয় ডায়রিয়া সেরে যাওয়ার পরিবর্তে আরও বাড়তে থাকে কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়া ভয়াবহ আকারে হতে পারে যার ফলে পায়খানার সাথে অনেক বেশি পরিমাণে পানি শরীর থেকে হারিয়ে যায় এই পানিশূন্যতাই ডায়রিয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ জটিলতাপানিশূন্যতার ফলে শরীরে বিশেষ করে রক্তে লবণের মাত্রায় নানান ধরনের অস্বাভাবিকতা তৈরি হতে পারে যা আপনার জন্য বিপজ্জনক তাই পাতলা পায়খানা হলে বেশি করে পানি ও তরল খাবার খেয়ে শরীরের পানির অভাব পূরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণপানিশূন্যতা তৈরি হলে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে[২৭]—ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া মুখ শুকিয়ে যাওয়া স্বাভাবিকের চেয়ে কম পরিমাণে প্রস্রাব হওয়া গাড় রঙের প্রস্রাব ক্লান্তি মাথা ঘুরানো চামড়ায় চিমটি দিয়ে ধরে কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিলে তা সাথে সাথে পূর্বের অবস্থানে ফিরে না যাওয়া বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগা চোখ দেবে যাওয়া বা কোটরের ভেতরে ঢুকে গেছে বলে মনে হওয়াএই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন ডায়রিয়া গর্ভধারণের একটি লক্ষণগর্ভাবস্থার শুরুর দিকে শরীরের হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন হওয়ার ফলে পেটের কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে যার মধ্যে পাতলা পায়খানাও রয়েছে তবে ডায়রিয়া কখনোই গর্ভধারণের সুনির্দিষ্ট লক্ষণ নয়গর্ভবতী হলে আপনি প্রথম যেই উপসর্গ খেয়াল করতে পারেন সেটি হলো পিরিয়ড বাদ যাওয়া এ ছাড়া স্তনে ব্যথা হওয়া মাথা ঘুরানো বমি বমি লাগা—এরকম কিছু উপসর্গ আপনি লক্ষ করে থাকতে পারেন তারপর প্রেগন্যান্সি টেস্টের মাধ্যমে গর্ভধারণ নিশ্চিত করা যায়পড়ুন গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণডায়রিয়া গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়অনেকসময় ডায়রিয়া হলে গর্ভবতী নারীরা দুশ্চিন্তায় পরে যান যে এর ফলে গর্ভের সন্তানের উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পরতে পারে অথবা গর্ভপাত হতে পারে পাতলা পায়খানার সাথে পেটে ব্যথা হলে সেই ব্যথা গর্ভপাতের ব্যথার মতো মনে হতে পারেতবে আপনার প্রজননতন্ত্র ও পরিপাক নালি শরীরের সম্পূর্ণ ভিন্ন দুইটি অঙ্গতন্ত্র গর্ভাবস্থায় ডায়রিয়া হলে যদি পানিশূন্যতা ও ইনফেকশনের জন্য যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া হয় তা হলে সাধারণত গর্ভাবস্থার উপর এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে নাগর্ভাবস্থার শেষের দিকে ডায়রিয়া প্রসবের লক্ষণপ্রোস্টাগ্ল্যানডিন আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক উপাদান যা প্রসবেও সহায়তা করে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শরীরে এর মাত্রা বেড়ে যায় এর ফলে পাতলা পায়খানা হতে পারে[২৮] সাধারণত প্রসবের দুই একদিন আগে এমন হয়ে থাকে তবে সবার ক্ষেত্রে এমনটা নাও হতে পারেতাই গর্ভাবস্থার শেষের দিকে ডায়রিয়া হলে প্রসবের সময় কাছে চলে এসেছে বলে ধারনা করা যেতে পারে তবে প্রসব শুরু হওয়ার আরও জোরালো কিছু লক্ষণ রয়েছে যা আপনাকে প্রসবের প্রস্তুতি নিতে আরও সুনির্দিষ্ট ভাবে সহায়তা করবে যেমন পেটে টান বা প্রসব ব্যথা অনুভব করা পানি ভাঙা রক্ত মিশ্রিত স্রাব নির্গত হওয়া গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে যা নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় নাক থেকে রক্ত পড়লে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে যান তবে গর্ভাবস্থায় এমনটা হওয়া খুব কমন এবং সাধারণত দুশ্চিন্তার কারণ নয়[১] ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব এই আর্টিকেলে গর্ভকালীন সময়ে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ ও সমাধানগুলো সহজ ভাষায় তুলে ধরা হয়েছেগর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে যা নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় নাক থেকে রক্ত পড়লে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে যান তবে গর্ভাবস্থায় এমনটা হওয়া খুব কমন এবং সাধারণত দুশ্চিন্তার কারণ নয়[১] ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব এই আর্টিকেলে গর্ভকালীন সময়ে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ ও সমাধানগুলো সহজ ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে গর্ভাবস্থায় নাক থেকে রক্ত পড়ার কোনো নির্দিষ্ট সময়কাল নেই এই সমস্যা গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে শুরু হয়ে পুরো গর্ভকাল জুড়ে চলতে পারে গর্ভাবস্থায় কতদিন ধরে এই সমস্যা থাকবে সেটা গর্ভবতীর শারীরিক অবস্থা ও তার জীবনধারার মতো কিছু বিষয়ের সাথে জড়িত তাই একেকজনের ক্ষেত্রে এই সময়কাল একেকরকম হতে পারে গর্ভধারণের পর আপনার শরীরে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয় এমন কিছু পরিবর্তনের কারণে গর্ভবতীদের নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারেগর্ভাবস্থায় নাক থেকে রক্ত পড়ার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—১ শরীরে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে রক্তের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায়বাড়তি রক্ত প্রবাহের কারণে নাকের ভেতরের আবরণ কিছুটা ফুলে যায়এ ছাড়া এই আবরণে চিকন চিকন পাতলা রক্তনালী থাকে যার সংখ্যাও বেড়ে যায়রক্ত বেড়ে যাওয়াতে এগুলোও দুর্বল হয়ে যায় সব মিলিয়ে ভেতরের আবরণ শুকিয়ে এবং রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়২ হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া গর্ভাবস্থায় কিছু হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে আপনার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মতো নাকেও পরিবর্তন আসে এসময়ে নাকের ভেতরের আবরণ পুরু হয়ে ওঠে এবং শুকিয়ে যায় ফলে আবরণ থেকে সহজেই রক্তক্ষরণ হতে পারে৩ পানিশূন্যতা গর্ভাবস্থায় শরীরের পানির চাহিদা বেড়ে যায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খাওয়া হলে সহজেই পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন তৈরি হতে পারে এমন অবস্থায় আপনার নাকের ভেতরের আবরণ শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে এই কারণেও নাক থেকে রক্ত পড়তে পারে৪ এলার্জি অথবা ঠাণ্ডাসর্দি এলার্জি অথবা সর্দি হলে নাকের ভেতরের আবরণে প্রদাহ হয় ফলে সেখান থেকে সহজেই রক্তক্ষরণ হতে পারেউল্লেখ্য গর্ভাবস্থায় নাক দিয়ে রক্ত পড়ার পাশাপাশি নাক বন্ধ থাকার সমস্যাও বেশ কমন সহজ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি নাক থেকে রক্ত পড়া দ্রুত বন্ধ করতে পারেন নাক থেকে রক্ত পড়লে করণীয়—শুয়ে না থেকে উঠে সোজা হয়ে বসুন অথবা দাঁড়ান এতে করে নাকের রক্তনালীতে রক্তের চাপ কিছুটা কমে আসে যা রক্তপাত কমাতে সাহায্য করে বসা অবস্থায় নাকের নরম অংশ অর্থাৎ নাকের হাড়ের ঠিক নিচে ও নাকের ছিদ্রের ঠিক উপরের অংশটি নিচের ভালোমতো চেপে ধরুন নাকে ব্যথা না দিয়ে সর্বোচ্চ যতটুকু চাপ দেওয়া সম্ভব ততটুকুই চাপ দিবেন এভাবে একটানা চাপ দিয়ে ১০–১৫ মিনিট ধরে থাকুননাক চেপে ধরামাথা কিছুটা সামনে ঝুঁকান এবং মুখ দিয়ে শ্বাস নিন এতে করে রক্ত গলার ভেতর দিয়ে না নেমে নাক দিয়ে বের হয়ে যাবে এভাবে রক্ত গিলে ফেলার সম্ভাবনা কমানো যাবে একটা রুমালে ফ্রোজেন মটরশুঁটি কোনো সবজির প্যাকেট কিংবা আইস প্যাক পেঁচিয়ে নাকের ওপর ধরে রাখতে পারেন এটি নাকের রক্ত প্রবাহ কমিয়ে রক্ত পড়া থামাতে সাহায্য করতে পারে যদি এসব উপায়ে রক্ত পড়া বন্ধ না হয় তাহলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিননাক থেকে রক্ত পড়া থেমে যাওয়ার পর কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা নাক ঝাড়া নিচে ঝুঁকে কিছু করা ভারী কাজ করা ও গরম পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন নাক থেকে রক্ত পড়া প্রতিরোধে আপনি নিচের ঘরোয়া উপায়গুলো অবলম্বন করতে পারেন—১ নাকের ভেতরের আবরণকে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করুন নাকের ভেতরের আবরণ শুষ্ক হয়ে গেলে সেখানে রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তাই নাকের ভেতরটাকে ভেজা ভেজা রাখতে পারলে নাক থেকে রক্ত পড়ার প্রবণতা কমে আসতে পারে নাককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করার জন্য—নাকের ভেতর হালকা করে স্যালাইন ড্রপ বা স্প্রে ও ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অন্য কোনো নাকের ড্রপ বা ঔষধ ব্যবহার করবেন না[৭] পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার খেয়ে নিজেকে পানিশূন্যতা থেকে রক্ষা করুন একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন শুষ্ক বাতাস নাকের ভেতরের ত্বককে আরও শুষ্ক করতে পারে শীতকালে রুমের বাতাসকে আর্দ্র রাখতে হিউমিডিফায়ার ব্যবহার করতে পারেন[৮]২ নাকের আবরণকে আঘাত থেকে রক্ষা করুন নাকের ভেতর হালকা আঘাত থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যেতে পারে তাই যত্নের সাথে ছোটোখাটো আঘাত থেকে নাককে রক্ষা করুন যেমন—নাক ঝাড়ার সময় খুব জোরে না ঝেড়ে আলতোভাবে ঝাড়ুন প্রয়োজন ছাড়া বার বার নাক ঝাড়ার অভ্যাস থাকলে তা পরিত্যাগ করুন নাক খুঁটানো থেকে বিরত থাকুন৩ নাকের ভেতর চাপ কমানোর জন্য মুখ খুলে হাঁচি দিন হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ খোলা রাখলে নাকের ওপর কম চাপ পড়ে এটা রক্ত পড়ার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করতে পারে৪ ঠাণ্ডাসর্দি অথবা অ্যালার্জির জন্য চিকিৎসা নিন সর্দি অথবা অ্যালার্জি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন সঠিক চিকিৎসা নিলে নাক বন্ধ থাকা ও রক্ত পড়ার সম্ভাবনা কমে আসবে সাধারণত গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো নাক থেকে সামান্য রক্ত পড়া স্বাভাবিক এবং ঘরোয়াভাবেই এর সমাধান করা যায় তবে কোনো কোনো পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে যেমন—যদি ১০–১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে নাক দিয়ে রক্তপাত হয় যদি ঘন ঘন নাক থেকে রক্তপাত হয় যদি ভারী রক্তপাত হয়[৯] যদি এত বেশি রক্ত গিলে ফেলেন যে বমির উদ্রেক হয় যদি মাথায় আঘাত পাওয়ার পর থেকে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে যদি মাথা ঘুরায় অথবা দুর্বল লাগে যদি বুকে ব্যথা অথবা শ্বাসকষ্ট হয় যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকেএ ছাড়া নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সাথে অন্য কোনো লক্ষণ (যেমন নাকে ব্যথা অথবা মাথা ব্যথা) থাকা স্বাভাবিক নয় সুতরাং নাক দিয়ে রক্ত পড়ার পাশাপাশি যদি আপনার এই লক্ষণগুলো থাকে তাহলেও দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিতগর্ভাবস্থার যেকোনো সময়ে আপনার নাক থেকে রক্ত পড়ার অভিজ্ঞতা হয়ে থাকলে পরবর্তী গর্ভকালীন চেকআপে বিষয়টি ডাক্তারকে জানাবেন সাধারণত গর্ভাবস্থায় নাক দিয়ে রক্ত পড়া তেমন শঙ্কার কারণ না হলেও কখনো কখনো তা কিছু গর্ভকালীন জটিলতার লক্ষণ হতে পারে ডাক্তারকে বিষয়টি জানিয়ে রাখলে তিনি আপনাকে পর্যবেক্ষণ করে উপযুক্ত পরামর্শ দিতে পারবেন গর্ভবতী অবস্থায় কোনো একদিন হঠাৎ করেই আপনার নাক থেকে রক্ত পড়া শুরু হতে পারে এবং এতে আপনি খানিকটা বিচলিত হয়ে পড়তে পারেন এটাই স্বাভাবিক নাক দিয়ে রক্ত পড়ার স্থান সময় ও পরিমাণে ব্যাপক ভিন্নতা থাকতে পারে প্রসবের সময় যত ঘনিয়ে আসে মায়েদের প্রসব প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা তত বাড়তে থাকে পানি ভাঙা এর মধ্যে একটি সাধারণত প্রসব প্রক্রিয়ার শুরুতে পানি ভেঙে থাকে তবে পানি ভাঙা ছাড়াও প্রসব হতে পারেপ্রসবের সময় যত ঘনিয়ে আসে মায়েদের প্রসব প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা তত বাড়তে থাকে পানি ভাঙা এর মধ্যে একটি সাধারণত প্রসব প্রক্রিয়ার শুরুতে পানি ভেঙে থাকে তবে পানি ভাঙা ছাড়াও প্রসব হতে পারেপানি ভাঙা কীভাবে বুঝতে হয় এবং পানি ভাঙ্গলে করণীয় কী—এসব বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকলে তা আপনার প্রসবের প্রক্রিয়াটিকে সহজ ও ঝামেলামুক্ত করতে সাহায্য করবে গর্ভে আপনার সন্তান একটি থলির ভেতর বেড়ে ওঠে যার নাম এমনিওটিক স্যাক এই থলিটি এক ধরনের পানি দিয়ে পূর্ণ থাকে যাকে বলা হয় এমনিওটিক ফ্লুইড এই থলিতে ভেসে ভেসে আপনার সন্তান গর্ভে বেড়ে ওঠে এবং বাইরের চাপ ও ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা পায়[১]প্রসবের শুরুতে এই থলিটি নিজ থেকেই ছিঁড়ে যায় এবং এর ভেতরের পানি সন্তান প্রসব হওয়ার রাস্তা দিয়ে বের হয়ে আসে এ প্রক্রিয়াকে আমরা পানি ভাঙা হিসেবে জানি গর্ভাবস্থার ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহকে প্রসবের স্বাভাবিক সময়কাল হিসেবে ধরা হয় স্বাভাবিকভাবে এই সময়ের মধ্যেই পানি ভাঙে সাধারণত প্রসববেদনা শুরু হওয়ার পর পানি ভাঙেতবে কারও কারও ক্ষেত্রে প্রসববেদনা শুরু হওয়ার আগেও পানি ভাঙ্গতে পারে যদি ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগে পানি ভেঙে যায় তাকে বলা হয় প্রিটার্ম রাপচার অফ মেমব্রেন পানি ভাঙলে সাধারণত যেই লক্ষণগুলো দেখা যায়—পানি ভাঙ্গলে আপনার যোনি ও এর আশেপাশের জায়গা ভেজা ভেজা লাগতে পারে আপনার অন্তর্বাস এবং পায়জামা ভিজে যেতে পারে অনেকসময় যোনিপথে একসাথে অনেকটুকু পানিও বের হয়ে আসতে পারে তবে সাধারণত পানি ভাঙ্গলে লম্বা সময় ধরে অল্প অল্প করে পানি বের হতে থাকে এই পানি দেখতে পরিষ্কার অথবা হাল্কা হলুদ রঙের হয়পানি ভাঙা না কি প্রস্রাবঅনেকসময় প্রস্রাব না কি পানি ভাঙার পানি—এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে বিভ্রান্তি দূর করার একটি উপায় হলো বের হওয়া পানির গন্ধ যদি যোনি থেকে বের হওয়া তরলটির প্রস্রাবের মতো অর্থাৎ অ্যামোনিয়ার ন্যায় ঝাঁঝালো গন্ধ থাকে সেক্ষেত্রে এটি প্রস্রাব আর যদি কোনো গন্ধ না থাকে অথবা একটি মিষ্টি গন্ধ থাকে সেক্ষেত্রে এটি পানি ভাঙার পানিপানি ভাঙা না কি স্রাবস্রাব সাধারণত একটু ঘন আঠালো ও দুধের মতো সাদা হয় আর পানি ভাঙার পানিটি হালকা হলুদ বা ফ্যাকাশে রঙের এবং পাতলা তরল জাতীয় হয়ে থাকেতবে খেয়াল রাখতে হবে যে পানি ভাঙার সাথে একই সময়ে আপনার মিউকাস প্লাগ অর্থাৎ গর্ভকালে জরায়ুমুখে জমা হওয়া স্রাবও নিঃসৃত হতে পারে[২] এটি কিছুটা রক্ত মিশ্রিত হতে পারে যাকে বলে শো প্রসব প্রক্রিয়ার শুরুতে এগুলো স্বাভাবিকভাবেই হয়ে থাকে তাই এমনটা হলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই পানি ভেঙে গেলে আপনি উত্তেজিত অনুভব করাটা স্বাভাবিক তবে নিজেকে শান্ত রেখে সঠিকভাবে পরবর্তী ধাপগুলো নেওয়ার চেষ্টা করুন যদি প্রসববেদনাসহ পানি ভেঙে থাকে তাহলে আপনার প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে ধারণা করা যায় সেক্ষেত্রে আপনার সন্তান প্রসবের পরিকল্পনা অনুযায়ী হাসপাতালে অথবা ম্যাটার্নিটি ক্লিনিকে যানকখন দ্রুত হাসপাতালে যাবেন যদি গর্ভাবস্থায় আপনাকে চিকিৎসক কোনো ইনফেকশনের ব্যাপারে সতর্ক করে থাকেন বিশেষ করে যদি আপনি গ্রুপ বি স্ট্রেপটোকক্কাস দিয়ে আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে পানি ভাঙার সাথে সাথে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করুন কারণ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আপনার সন্তানও একই ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে যদি পানি ভাঙার পর পানির রঙ সবুজাভ অথবা বাদামী মনে হয় সেক্ষেত্রে এমনিওটিক ফ্লুইডের সাথে গর্ভের শিশুর প্রথম পায়খানা বা মেকোনিয়াম মিশ্রিত থাকতে পারে এমনটা হলে গর্ভের শিশুর মেকোনিয়াম মিশ্রিত পানি খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে যা শিশুটির ক্ষতি করতে পারে তাই দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে যদি পানির সাথে বেশি পরিমাণে রক্ত যেতে থাকে তবে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে পানিতে অল্প পরিমাণে রক্ত মিশ্রিত থাকা সাধারণত স্বাভাবিক কিন্তু বেশি পরিমাণে রক্ত যাওয়াটা গর্ভফুল বা প্লাসেন্টার জটিলতা নির্দেশ করে যা গর্ভের শিশুর জন্য মারাত্মক হতে পারে যদি একবার অল্প পরিমাণে পানি বের হয়ে থেমে যায় এ ক্ষেত্রে আপনার গর্ভের সন্তান নিচে নেমে এসে তার মাথা দিয়ে পানি বের হওয়ার রাস্তাবন্ধ করে দেওয়ার একটি আশংকা থাকে যদি পানি ভাঙার সাথে আপনার যোনিপথে কিছু আঁটকে আছে বলে মনে হয় অথবা যদি যোনিপথে নাড়ির একটি অংশ দেখতে পান যদি প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে আপনার পানি ভাঙে তাহলে আম্বিলিকাল কর্ড বা নাড়ি নিচে নেমে যাওয়ার আশংকা থাকে একে বলা হয় আম্বিলিকাল কর্ড প্রোল্যাপ্স যদি গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ অথবা তার পরে আপনার পানি ভাঙে এবং এর সাথে প্রসববেদনা শুরু না হয় সেক্ষেত্রে আপনি ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে পারেন অপেক্ষা করার সময়ে কিছু নিয়ম মেনে চলুন—ইনফেকশনের ঝুঁকি কমানোর জন্য আপনার অন্তর্বাস যোনি ও যোনির আশেপাশের জায়গা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন প্রয়োজনে প্যাড ব্যবহার করুন সহবাস এড়িয়ে চলুন টয়লেটে গেলে যোনির অংশটুকু সামনে থেকে পেছনের দিকে ধোয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দিনতবে বাসায় অপেক্ষা করার চেয়ে এসময়ে হাসপাতালে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্বাবধানে থাকাটাই অনেকে নিরাপদ মনে করেন২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও যদি প্রসববেদনা শুরু না হয় সেক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবে প্রসব শুরু করানোর জন্য ডাক্তার আপনাকে কিছু ঔষধ দিতে পারেন যেমন অক্সিটোসিন কৃত্রিমভাবে প্রসব শুরু করানোর পদ্ধতিকে বলা হয় লেবার ইনডাকশনপানি অর্থাৎ এমনিওটিক ফ্লুইডে অ্যান্টিবডি থাকে যা গর্ভের শিশুকে বিভিন্ন রোগজীবাণু থেকে সুরক্ষা দেয় পানি ভাঙার ফলে এই পানি ছাড়া গর্ভের শিশু ইনফেকশনের ঝুঁকিতে থাকে তাই তাড়াতাড়ি শিশুকে বের করে আনার জন্য লেবার ইনডাকশন করা হয়যদি ৩৭ সপ্তাহের আগে এবং ৩৪ সপ্তাহের পর এমন হয় সেক্ষেত্রে পানি ভাঙার পর ২৪–৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত প্রসববেদনা শুরু হওয়ার অপেক্ষা করা হয়ে থাকে এরপরও প্রসববেদনা শুরু না হলে সাধারণত অক্সিটোসিন দিয়ে প্রসব প্রক্রিয়া শুরু করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৩৪ সপ্তাহের আগে পানি ভেঙে গেলে এবং প্রসব বেদনা না থাকলে এই অবস্থাকে বলা হয় প্রিটার্ম প্রিলেবার রাপচার অফ মেমব্রেন ৩৪ সপ্তাহের আগে গর্ভের শিশু সাধারণত পুরোপুরি পরিণত হয় না এসময় তার ফুসফুস অপরিপক্ব থেকে যায়[৪]তাই এসময়ে জন্মগ্রহণ করলে শিশুটির সুস্থভাবে বাঁচবার সম্ভাবনা কম থাকে এজন্য সাধারণত ৩৪ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগে পানি ভাঙলেও প্রসবের প্রক্রিয়া যথাসম্ভব পেছানোর চেষ্টা করা হয়এক্ষেত্রে প্রসবের প্রক্রিয়া পেছাতে এবং গর্ভের শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়—গর্ভবতী মাকে টয়লেটের সুবিধাসহ বেড রেস্ট অর্থাৎ সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখা হয় গর্ভের শিশুর ফুসফুসের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে এবং রেসপাইরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম নামক শ্বাসকষ্টজনিত মারাত্মক জটিলতা কমাতে স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ দেওয়া হয় ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয় গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় আপনার পেটে ব্যথা ও যন্ত্রণা হওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি হতে পারে এমন একটি অনুভূতি হলো পেট শক্ত হওয়া বা পেট আঁটসাঁট হয়ে আসছে মনে হওয়াগর্ভাবস্থায় আপনার পেটে ব্যথা ও যন্ত্রণা হওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি হতে পারে এমন একটি অনুভূতি হলো পেট শক্ত হওয়া বা পেট আঁটসাঁট হয়ে আসছে মনে হওয়াপেট শক্ত হওয়াকে মাঝে মাঝে পেট কামড়ানোর সাথেও মিলিয়ে ফেলতে পারেন এমনকি নিয়মিত বিরতিতে পেটে টান অনুভব করলে একে জরায়ুর সংকোচনের মতোও মনে হতে পারে গর্ভাবস্থায় আপনার গর্ভের বাড়ন্ত শিশুকে জায়গা দিতে আপনার জরায়ু আকারে বাড়ে এর ফলে আপনার পেট আঁটসাঁট হয়ে আসতে পারে স্বাভাবিক কারণে আপনার যেমন এ অনুভূতি হতে পারে তেমনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে গর্ভপাত কিংবা অকাল প্রসবের মতো জটিল সমস্যা থেকেও পেট শক্ত হতে পারেগর্ভাবস্থার বিভিন্ন সময়ে পেট শক্ত বা টানটান হওয়ার কারণগুলো হলো—প্রথম ত্রৈমাসিকেজরায়ুর মাংসপেশির স্ট্রেচিং বা টান গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস আপনার বাড়ন্ত শিশুর কারণে বড় হয়ে যাওয়া জরায়ু চারপাশে চাপ দিতে থাকে একারণে পেট শক্ত লাগতে পারে জরায়ুর পেশিগুলো প্রসারিত ও দীর্ঘায়ত হওয়ার কারণে আপনার হঠাৎ হঠাৎ করে পেটে তীব্র ব্যথাও অনুভব হতে পারেকোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য পরিচিত একটি সমস্যাগর্ভধারণের ফলে কিছু বিশেষ হরমোনের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায় এসব হরমোনের প্রভাবে খাবার হজমের সাথে জড়িত পেশিগুলো কিছুটা শিথিল হয়ে আসে এবং হজমের গতি কমে যায়এতে করে আপনার পেটে গ্যাস তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পেট ফাঁপা লাগে অনেকের ক্ষেত্রে এই হরমোনের প্রভাবে কোষ্ঠকাঠিন্যও দেখা দেয় গর্ভপাতের কারণে গর্ভধারণের ২৮ তম সপ্তাহের আগে গর্ভের শিশুর মৃত্যু হওয়াকে গর্ভপাত বলে পেট শক্ত হয়ে আসার পাশাপাশি যদি আপনার পেটে ব্যথাও থাকে এটি গর্ভপাতের লক্ষণ হতে পারেগর্ভপাত হলে সাধারণত আপনার পেট শক্ত হয়ে আসার পাশাপাশি নিচের এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যায়[৪]—যোনিপথে ফোঁটা ফোঁটা কিংবা ভারী রক্তপাত হওয়া পেট ব্যথা হওয়া বা মাসিকের ব্যথার মতো পেট কামড়ানো ব্যথা কিংবা রক্তপাত ছাড়াও যোনিপথে হঠাৎ অধিক পরিমাণে তরল বেরিয়ে আসা যোনিপথে যেকোনো ধরনের টিস্যু জাতীয় পদার্থ বা মাংসপিণ্ডের ন্যায় অংশ বের হয়ে আসাএ ছাড়া গর্ভাবস্থায় নিচের কারণগুলো থাকলে আপনার গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকতে পারে[৫][৬]—অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস ইনফেকশন থাইরয়েডের সমস্যা সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস জরায়ুর গঠন বা কাজে যেকোনো ধরনের ত্রুটি বংশগত কারণপেট ব্যথা ও শক্ত হয়ে আসার সাথে সাথে উপরের লক্ষণগুলো অথবা ঝুঁকির কারণগুলো থাকলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোনগর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেদ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গর্ভাবস্থার পরিবর্তনগুলোর সাথে আপনার শরীর খাপ খাওয়াতে শুরু করে এসময়ও বিভিন্ন কারণে আপনার পেট শক্ত মনে হতে পারেযেমন দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে আপনার জরায়ু থেকে কুঁচকি পর্যন্ত থাকা রাউন্ড লিগামেন্টও জরায়ুর সাথে সাথে প্রসারিত হয় এর ফলে আপনার জরায়ু ও কুঁচকির আশেপাশে শক্ত হয়ে আসছে বা টান খাচ্ছে বলে মনে হতে পারেব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচনগর্ভাবস্থায় ব্র্যাক্সটন হিক্স নামের সংকোচনের জন্যও আপনার পেট আঁটসাঁট বা শক্ত হয়ে আসতে পারে প্রসবের জন্য প্রস্তুতিমূলক স্বাভাবিক সংকোচন প্রসারণ হলো ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন একে ফলস লেবার পেইনও বলা হয়সাধারণত গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় বা তৃতীয় ত্রৈমাসিকের আগে এই সংকোচন অনুভূত হয় না[৭] প্রকৃত প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার অনেক সপ্তাহ আগে থেকেই এ ধরনের প্রস্তুতিমূলক ব্র‍্যাক্সটন হিক্স সংকোচন শুরু হতে পারে[৮]ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন আপনার জরায়ুর ওপর থেকে শুরু হয়ে নিচে এসে নামে এ ধরনের সংকোচন অনিয়মিত ভাবে হয় ১৫ সেকেন্ড থেকে ৩০ সেকেন্ড ব্যাপী স্থায়ী হয় কখনো কখনো এর চেয়ে বেশি সময় ধরেও হতে পারেবিভিন্ন কারণে আপনার ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন হতে পারে যেমন—গর্ভাবস্থায় অনেক বেশি কাজকর্ম করলে মূত্রথলি পূর্ণ থাকলে বা প্রস্রাবের বেগ থাকলে সহবাসের সময় বা পরে শরীরে পানির অভাব থাকলে বা ডিহাইড্রেটেড হয়ে গেলেআপনি যদি প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হোন তাহলে ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচনকে প্রসবের ব্যথার সাথে মিলিয়ে ফেলতে পারেনব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন ও প্রসবের ব্যথার মধ্যে নিচের পার্থক্যগুলো দেখা যায়[৯][১০]—ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন প্রকৃত প্রসব ব্যথা ব্র‍্যাক্সটন হিক্স সংকোচন হঠাৎ করেই শুরু হয় এই সংকোচন সাধারণত অনিয়মিত হয় কোনো নির্দিষ্ট ছন্দ থাকে না প্রকৃত প্রসব ব্যথা সাধারণত নির্দিষ্ট সময় পর পর নিয়মিত ভাবে হয় এই সংকোচন বা ব্যথার একটি সুনির্দিষ্ট ছন্দ বা ধরন থাকে ব্যথার স্থায়িত্ব ও তীব্রতা সাধারণত বাড়ে না ধীরে ধীরে ব্যথার স্থায়িত্ব ও তীব্রতা বাড়ে সময়ের সাথে নিয়মিত বিরতিতে ঘন ঘন ব্যথা হতে থাকে হাঁটাচলা করলে কিংবা বিশ্রাম নিলে এই ব্যথা বা সংকোচন কমে আসতে পারে অবস্থান পরিবর্তন করলেও এই সংকোচন বন্ধ হয়ে যেতে পারে বিশ্রাম হাঁটাচলা কিংবা অবস্থান পরিবর্তনে প্রকৃত প্রসব ব্যথা সাধারণত কমে না এই ধরনের ব্যথা সাধারণত পেটের সামনের দিকেই অনুভূত হয় প্রকৃত প্রসব ব্যথা সাধারণত কোমরের পেছন দিক থেকে শুরু হয় এবং পরে পেটের সামনের দিকে আসে গর্ভাবস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিকেগর্ভাবস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিকে পেট শক্ত হয়ে আসা প্রসবের লক্ষণ হতে পারে এক্ষেত্রে শুরুতে মৃদু অনুভূতি থাকে যা সময়ের সাথে সাথে তীব্র হয়যদি আপনার পেটে প্রতি ঘন্টায় চার বারের বেশি সংকোচন হয় বিশেষ করে যদি গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহের আগে এমন হয় তাহলে সেটা প্রসবের লক্ষণ হতে পারে এসময়ে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবেনিচের লক্ষণগুলোও প্রসবের কারণে দেখা যায় এসব লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন—পেট আঁটসাঁট হয়ে আসার পাশাপাশি তলপেটে ব্যথা হলে যোনিপথে পরিষ্কার তরল বের হয়ে আসলে যাকে পানিভাঙা বলে যোনিপথে রক্তমিশ্রিত স্রাব কিংবা রক্ত বের হয়ে আসলে আপনার পেট আঁটসাঁট হয়ে আসার অনুভূতি যদি মৃদু ও অনিয়মিত হয় তাহলে নিচের ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে স্বস্তি পেতে পারেন—১ পর্যাপ্ত পানি পান করুন শরীরে পানির অভাব থেকে পানিশূন্যতা হলে পেটে টান খাওয়ার মতো এমন অনুভূতি হতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পানি পান করার চেষ্টা করুন একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবেতবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন২ খাবার গ্রহণে সতর্কতা অবলম্বন করুন কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পেট শক্ত হয়ে আসলে সারাদিনে অল্প অল্প করে বেশ কয়েকবার খান আঁশ জাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন ভাজাপোড়া খাবার ও কোমল পানীয় (যেমন কোক ফান্টা ও পেপসি) এড়িয়ে চলুনসতর্কতা গর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় খাবার অথবা পানীয় খাওয়া এড়িয়ে চলবেনসাধারণত ২ কাপ কফি কিংবা ২–৩ কাপ চায়েই এই পরিমাণ ক্যাফেইন থাকতে পারেনিয়মিত শরীরচর্চা করুন গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম খাবার হজমে সাহায্য করতে পারে এ ছাড়া ব্যায়াম গর্ভাবস্থার নানান জটিলতা কমাতেও সাহায্য করতে পারে[১৩] গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম করা নিরাপদ ও কার্যকর[১৪] এটি নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করে[১৫]এ ছাড়া সময়ের আগে সন্তান প্রসব হওয়া এবং কম ওজনের শিশু জন্মদানের সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে[১৬] শুধু তাই নয় গর্ভাবস্থায় শরীরচর্চা করলে নারীরা সন্তান প্রসবের পরে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন[১৭]কাজেই আপনার ডাক্তারের নিষেধ না থাকলে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হালকা পরিশ্রম অথবা পছন্দের কোনো ব্যায়াম করতে পারেনঅবস্থানের পরিবর্তন করুন আপনি যদি বুঝতে পারেন যে আপনার ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন হচ্ছে তাহলে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করুন যেমন দাঁড়িয়ে থাকলে শুয়ে পড়ুনযেকোনো অস্বস্তিকর দেহভঙ্গিতেও এমন হতে পারে সেক্ষেত্রে আপনার জায়গার পরিবর্তন করে দেখুনখুব দ্রুত জায়গা পরিবর্তনেও এমন হতে পারে শোয়াবসা থেকে ওঠার সময়ে তাড়াহুড়ো না করে আস্তে ধীরে উঠুন বসা কিংবা শোয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী বালিশ বা কুশন ব্যবহার করে আরামদায়ক অবস্থান তৈরি করে নিনপর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক ৭–৯ ঘণ্টার ঘুমকেই আদর্শ বলে ধরা হয়[১৮][১৯] এর চেয়ে কম ঘুম হলে সেটি আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে ও গর্ভাবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে[২০][২১][২২] তাই গর্ভাবস্থায় নিয়ম মেনে ঘুম ও বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুনগরম সেঁক বা মালিশ নিন মাংসপেশির ব্যথায় হালকা মালিশে উপকার পেতে পারেন তাই হালকা গরম কিছুর সেঁক নিতে পারেন এবং হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন তবে খুব বেশি গরম এড়িয়ে চলুনজরুরি অবস্থা আপনার অস্বস্তি যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রশমিত না হয় অথবা নিচের কোনো লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন আপনার গর্ভাবস্থার সময়কাল ৩৬ সপ্তাহের কম হলে এবং সেই সাথে আপনার অকাল প্রসবের অন্যান্য লক্ষণ দেখা গেলে যোনিপথে রক্তপাত হলে যোনিপথে যেকোনো ধরনের তরল পদার্থ বের হয়ে আসলে তলপেটে অথবা যোনিপথে চাপ অনুভূত হলে প্রতি ৫ মিনিট পর পর বা নির্দিষ্ট বিরতিতে পেটে তীব্র সংকোচন বোধ করলে এবং সংকোচনগুলো প্রায় ৩০ সেকেন্ড থেকে ৬০ সেকেন্ড স্থায়ী হলে ও ক্রমাগত জোরালো হতে থাকলে আপনার গর্ভের শিশুর নড়াচড়া অনুভব করতে না পারলে কিংবা নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলেসিজারের পর পেট শক্ত কেন হয় গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা ও পেট কামড়ানো বেশ পরিচিত সমস্যা এগুলো সাধারণত দুশ্চিন্তার কারণ নয় তবে কখনো কখনো পেট ব্যথা কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হয় এই আর্টিকেলে সাধারণ ও গুরুতর—উভয় ধরনের পেট ব্যথা ও করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছেগর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা ও পেট কামড়ানো বেশ পরিচিত সমস্যা এগুলো সাধারণত দুশ্চিন্তার কারণ নয় তবে কখনো কখনো পেট ব্যথা কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হয় পেটে ভোঁতা ধরনের ব্যথা হতে পারে আবার তীক্ষ্ণ ব্যথাও হতে পারে আপনার পেট ব্যথা যদি তেমন তীব্র না হয় এবং বিশ্রাম দেহভঙ্গির পরিবর্তন পায়খানা অথবা বায়ুত্যাগের সাথে কমে যায় তাহলে সেই ব্যথা নিয়ে সাধারণত ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেইগর্ভধারণের ফলে আপনার শরীরে হরমোনজনিত নানান পরিবর্তন হয় তা ছাড়া গর্ভে বড় হতে থাকা শিশুকে জায়গা করে দিতে আপনার পেটের অংশেও বিভিন্ন পরিবর্তন আসে মূলত এসব কারণেই গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা হতে পারেপেট ব্যথার সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইমপ্ল্যান্টেশনমায়ের পেটে ভ্রূণ বড় হতে হতে পূর্ণাঙ্গ শিশুতে রূপ নেয় গর্ভধারণের পর পর এই ভ্রূণ যখন প্রথমবারের মতো আপনার জরায়ুতে নিজের জায়গা করে নেয় তখন সেই ঘটনাকে ইমপ্ল্যান্টেশন বলে এসময়ে তলপেটে কিছুটা ভোঁতা ধরনের মাসিকের ব্যথার মতো ব্যথা থাকতে পারে যে সময়টায় আপনার মাসিক হওয়ার কথা সাধারণত তার কাছাকাছি সময়ে দুইএক দিন ধরে এমন হালকা ব্যথা হয়ে থাকে তাই মাসিকের সময়ে এমন ব্যথার পরেও মাসিক না হলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে আপনি গর্ভবতী কি না সেটা জেনে নিনক্র্যাম্পিং বা পেট কামড়ানোগর্ভে বাড়ন্ত শিশুকে জায়গা দেওয়ার জন্য সময়ের সাথে জরায়ু প্রসারিত হতে থাকে ফলে জরায়ু পেটের অন্যান্য অঙ্গকে চাপ দেয় একারণে পেট ব্যথা হতে পারে অথবা পেট কামড়াতে পারে এ ধরনের ব্যথা সাধারণত তীব্র হয় না কিছুক্ষণের বিশ্রামেই ঠিক হয়ে যায় এ ছাড়াও গর্ভের সন্তান বড় হতে থাকলে পরিপাক নালীর ওপর চাপ বাড়তে থাকে চাপ বাড়ার কারণে হজমের গতি কমে গিয়ে পেট ফাঁপার সম্ভাবনা বেড়ে যায়[১] একারণেও পেট ব্যথা হতে পারেগ্যাস পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্যগর্ভধারণের ফলে আপনার দেহে কিছু বিশেষ হরমোনের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায় এমন একটি হরমোন হলো প্রোজেস্টেরন এই হরমোনের প্রভাবে খাবার হজমের সাথে জড়িত পেশিগুলো কিছুটা শিথিল হয়ে আসে এবং হজমের গতি কমে যায়[২] এতে করে আপনার পেটে গ্যাস তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পেট ফাঁপা লাগে অনেকের ক্ষেত্রে এই হরমোনের প্রভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বায়ুর সমস্যা দেখা দেয় এসব কারণে পেট ব্যথা ও অস্বস্তি হতে পারেপড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপালিগামেন্টের ব্যথালিগামেন্ট হলো সুতার মতো কিছু টিস্যু শরীরের বিভিন্ন হাড় ও জয়েন্ট (গিরা) লিগামেন্টের মাধ্যমে একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকেগর্ভকাল বাড়ার সাথে জরায়ু দ্রুত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এসময়ে জরায়ুর আশেপাশের থাকা পেশি ও লিগামেন্টগুলো জরায়ুকে সাপোর্ট দিতে গিয়ে কিছুটা টান খায় ও পুরু হয়ে যায় এজন্য আপনার পেটে ব্যথা প্রায়ই আসা যাওয়া করতে পারে অথবা পেটে অস্বস্তি হতে পারে বিশেষ করে গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে জরায়ু প্রসারিত হয়ে জরায়ু ও কুঁচকির মাঝামাঝি থাকা রাউন্ড লিগামেন্টে টান পড়ে পেট ব্যথা হতে পারেউল্লেখ্য রাউন্ড লিগামেন্টের ব্যথা মূলত গর্ভাবস্থার ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মাঝে দেখা যায় এক্ষেত্রে আপনি নড়াচড়া করার সময়ে সাধারণত পেটের যেকোনো এক পাশে ধারালো ছুরির আঘাতের মতো ব্যথা অনুভব করতে পারেন তবে ব্যথা সাধারণত কয়েক সেকেন্ড পরে নিজে নিজেই উপশম হয়ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচনগর্ভাবস্থায় অনেক গর্ভবতীর মতো আপনিও ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন অনুভব করতে পারেন এতে মূলত পেটে হালকা কামড়ানো অথবা পেটের নির্দিষ্ট কোনো অংশে টান লাগার মতো এক ধরনের অনুভূতি হয় জরায়ুর অনিয়মিত সংকোচনপ্রসারণের কারণে সাধারণত দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে এই ধরনের অনুভূতি হয়ে থাকে এটি খানিকটা প্রসবের ব্যথার মতো মনে হতে পারে ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই এটি আপনার গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদঅর্গাজম বা যৌন উত্তেজনার সময়ে ব্যথাসহবাসের সময়ে অর্গাজমের সময় কিংবা তার পরে পেট কামড়ানো অথবা ব্যথা হওয়া অস্বাভাবিক নয় এসময়ে এ ধরনের ব্যথার সাথে কোমর ব্যথাও হতে পারে অর্গাজমের সময়ে তলপেটে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায় এবং জরায়ুর সংকোচন হয় এর ফলে পেটে কামড়ানো অথবা টান লাগার মতো অনুভূতি হতে পারেআপনার যদি গর্ভাবস্থার সাথে সম্পর্কিত কোনো ঝুঁকি না থাকে কিংবা ডাক্তার যদি আপনাকে আগে থেকে সহবাস বা অর্গাজম সম্পর্কে নিষেধ না করে থাকেন তাহলে সাধারণত সহবাসে বা অর্গাজমের সময়ে এই ধরনের ব্যথা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই সহবাস বা অর্গাজমএর পরে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে অথবা একটু ঘুমিয়ে নিলে সাধারণত এই ধরনের ব্যথা চলে যায় তবে এই ধরনের ব্যথা অথবা পেট কামড়ানো নিয়ে দুশ্চিন্তা হলে একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পেট ব্যথা ঝুঁকির কারণ না হলেও কিছু ক্ষেত্রে পেট ব্যথা গুরুতর জটিলতা নির্দেশ করতে পারে এসব কারণের মধ্যে রয়েছে—জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণমায়ের ডিম্বাণু ও বাবার শুক্রাণুর মিলনের ফলে শিশুর ভ্রূণ সৃষ্টি হয় এই ভ্রূণই বড় হতে হতে পূর্ণাঙ্গ শিশুতে রূপ নেয় স্বাভাবিক গর্ভধারণের বেলায় ভ্রূণটি জরায়ুর ভেতরে জায়গা করে নেয় তবে কখনো কখনো ভ্রূণটি জরায়ুর বাইরে অস্বাভাবিক কোনো স্থানে (যেমন ডিম্বনালীতে) স্থাপিত হতে পারে এই ঘটনাকে ডাক্তারি ভাষায় এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বলে[৩]এই ধরনের গর্ভধারণে শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয় না এবং জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়৷ যদি ভ্রূণটি বেড়ে উঠতে থাকে তাহলে ডিম্বনালী অথবা অন্য অঙ্গ ফেটে গর্ভবতীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তাই দেরি না করে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির সঠিক চিকিৎসা নেওয়া খুবই জরুরিএক্টোপিক প্রেগন্যান্সির লক্ষণগুলো সাধারণত গর্ভাবস্থার ৪র্থ সপ্তাহ থেকে ১২তম সপ্তাহের মধ্যে দেখা যায় যার মধ্যে অন্যতম হলো পেট ব্যথা সাধারণত তলপেটের নিচের দিকে যেকোনো একপাশে ব্যথা হয় অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— যোনিপথে রক্তপাত কাঁধের আগায় ব্যথা প্রস্রাব ও পায়খানা করার সময়ে ব্যথা বা অস্বস্তি যোনিপথ দিয়ে বাদামী রঙের পানির মতো তরল বের হওয়া এসব লক্ষণের মধ্যে যেকোনোটি দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যানগর্ভপাতগর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহের আগে গর্ভের শিশুর মৃত্যু হওয়াকে গর্ভপাত বলে[৪] এই সময়ে পেট ব্যথা অথবা পেট কামড়ানোর সাথে যোনিপথে রক্তপাত হলে সেটি কখনো কখনো গর্ভপাতের লক্ষণ হতে পারে অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—বমি বমি ভাব ও বমি যোনিপথ দিয়ে স্রাব জাতীয় তরল বের হওয়া যোনিপথ দিয়ে কোষগুচ্ছ বা টিস্যু বের হয়ে আসা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলো (যেমন বমি বমি ভাব ও স্তনে ব্যথা) আর অনুভূত না হওয়া জ্বর দুর্বলতা ও অবসাদগর্ভপাতের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তার দেখানপ্রিএক্লাম্পসিয়াগর্ভাবস্থার শেষের দিকে বাচ্চার বৃদ্ধির ফলে জরায়ু ওপরের দিকে উঠে যেতে পারে এতে নিচের দিক থেকে পাঁজরে চাপ লেগে পাঁজরের ঠিক নিচে ব্যথা হতে পারে কিন্তু এ ব্যথা অসহ্যকর কিংবা একটানা হলে বিশেষ করে ডান পাশের পাঁজরের নিচে এমন ব্যথা হলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে এটি প্রিএক্লাম্পসিয়ার লক্ষণ হতে পারেপ্রিএক্লাম্পসিয়া গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপজনিত একটি মারাত্মক জটিলতা যা সাধারণত গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পর থেকে দেখা দিতে পারে পাঁজরের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথা হওয়া ছাড়াও নিচের চারটি লক্ষণের মধ্যে কোনোটি থাকলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে—তীব্র মাথা ব্যথা চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে যাওয়া অথবা চোখে আলোর ঝলকানির মতো কিছু দেখা হঠাৎ করেই পা হাত অথবা মুখ ফুলে যাওয়া ওপরের যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়াসময়মতো চিকিৎসা শুরু না করলে পরবর্তীতে এক্লাম্পসিয়া হতে পারে যা থেকে আপনি কোমায় চলে যেতে পারেন এমনকি আপনার ও গর্ভের শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারেঅকাল প্রসবনির্দিষ্ট সময়ের আগে সন্তান জন্মদানকে অকাল প্রসব বলা হয় গর্ভাবস্থার ৩৭তম সপ্তাহের আগে নিয়মিত বিরতিতে পেট কামড়ানো অথবা পেটে টান খাওয়া অকাল প্রসবের লক্ষণ হতে পারে এসময়ে কোমরেও ব্যথা হতে পারে এমন হলে আপনার হাসপাতালে ভর্তি থেকে ডাক্তারি পর্যবেক্ষণে থাকা প্রয়োজন অকাল প্রসবের অন্যান্য লক্ষণ হতে পারে—পানির মতো আঠালো অথবা রক্তমিশ্রিত স্রাব হওয়া স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথে যেকোনো পরিমাণে পানি ভাঙা তলপেটে চাপ লাগা অথবা মৃদু ব্যথা হওয়া একটানা মৃদু ও চাপা ধরনের পিঠ ব্যথা হওয়া তলপেটে মৃদু ব্যথার সাথে ডায়রিয়া হওয়া গর্ভের শিশুর নড়াচড়া কমে যাওয়াপ্ল্যাসেন্টা বা গর্ভফুল ছিঁড়ে যাওয়াগর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পর প্ল্যাসেন্টা বা গর্ভফুল জরায়ুর দেয়াল থেকে হঠাৎ করেই আলাদা হয়ে যেতে পারে এসময়ে সাধারণত যোনিপথে ভারী রক্তপাতের পাশাপাশি একটানা তীব্র পেট ব্যথা হতে দেখা যায় পেটে চাপ দিলে পাথরের মতো শক্ত জরায়ু হাতে লাগে এই ব্যথা সহজে প্রশমিত হয় নাএটিও এক ধরনের জরুরি অবস্থা কারণ এসময় প্লাসেন্টা গর্ভের শিশুকে অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে পারে না তা ছাড়া অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা থাকায় মা ও শিশু উভয়ের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে তাই এমন কোনো লক্ষণ থাকলে দেরি না করে হাসপাতালে যাওয়া খুবই জরুরিইউরিন বা প্রস্রাবের ইনফেকশনগর্ভাবস্থায় নারীদের প্রস্রাবের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়[৫] প্রস্রাবের ইনফেকশন হলে পেট ব্যথা হতে পারে এ ছাড়া প্রস্রাবের সময়ে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ও প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারেপ্রস্রাবের ইনফেকশনের সঠিক চিকিৎসা না নিলে কিডনির ইনফেকশনসহ বিভিন্ন গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা হতে পারে তাই এসময়ে প্রচুর পানি পান করুন এবং দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ইনফেকশন নিশ্চিত হলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনগর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক অথবা অন্য কোনো ধরনের ঔষধ সেবন করা বিপদজনক হতে পারে এজন্য এ অবস্থায় যেকোনো ঔষধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিনপড়ুন ইউরিন ইনফেকশন বা প্রস্রাবের সংক্রমণঅন্যান্য কারণপেট ব্যথার ওপরের কারণগুলো গর্ভধারণের সাথে সম্পর্কিত এমন কারণের বাইরে অর্থাৎ গর্ভাবস্থার সাথে সরাসরি সম্পর্ক নেই এমন কিছু কারণেও পেট ব্যথা হতে পারে গর্ভাবস্থার যেকোনো সময় এসব রোগের কারণে পেট ব্যথা হলেও জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—অ্যাপেন্ডিসাইটিস অ্যাপেন্ডিসাইটিসের সময় পেটের ডান পাশে নিচের দিকে ব্যথা হয় পেট ব্যথার পাশাপাশি ক্ষুধা কমে যাওয়া বমি ও বমি বমি ভাব ডায়রিয়া অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে কোলিসিস্টাইটিস বা পিত্তথলির প্রদাহ এ ধরনের ব্যথা পেটের ডান পাশে উপরের দিকে হয় এটি পেছনে এবং ডান পাশের কাঁধের দিকেও ছড়িয়ে যেতে পারে কিডনির পাথর এক্ষেত্রে পেটের যেকোনো একপাশে বেশ তীব্র ব্যথা হতে পারে এই ব্যথা সাধারণত আসাযাওয়া করে ব্যথার পাশাপাশি বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে প্যানক্রিয়াটাইটিস এক্ষেত্রে সাধারণত পেটের মাঝখানে অথবা দুই পাঁজরের মাঝের অংশে ব্যথা হয় যা সময়ের সাথে তীব্র হতে থাকে এ ছাড়া বমি জ্বর বদহজম চোখত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া ও নাড়ির গতি বেড়ে যাওয়াসহ নানান গুরুতর লক্ষণ দেখা দিতে পারেকখন ডাক্তারের কাছে যাবেন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথার পাশাপাশি নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেন— হঠাৎ করে তীব্র পেট ব্যথা অথবা কামড়ানো দেখা দিলে যোনিপথে রক্তপাত হলে নিয়মিত বিরতিতে পেট কামড়ানো অথবা পেটে টান পড়ার মতো অনুভূতি হলে মাসিকের রাস্তা দিয়ে অস্বাভাবিক স্রাব গেলে মাথা ঘুরালে অজ্ঞান হয়ে গেলে অথবা হঠাৎ করে অনেক ফ্যাকাশে হয়ে গেলে প্রিএক্লাম্পসিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে পায়খানার সাথে রক্ত গেলে অথবা তীব্র ডায়রিয়া হলে কোমর ব্যথা হলে প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা অথবা জ্বালাপোড়া হলে কিংবা রক্ত গেলে শরীরে কাঁপুনি অথবা জ্বর হলে বমি অথবা বমি বমি ভাব হলে হঠাৎ করেই পিপাসা বাড়ার পাশাপাশি প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে কিংবা প্রস্রাব একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘন্টা বিশ্রাম নেওয়ার পরেও ব্যথা না কমলে এগুলো পেট ব্যথার কোনো গুরুতর কারণের লক্ষণ হতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেলে মা ও গর্ভের শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে অনেক নারী বিশেষত যারা প্রথমবারের মতো গর্ভধারণ করছেন তারা ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচনকে প্রসবের ব্যথা ভেবে ভুল করতে পারেন গর্ভাবস্থার শেষ সপ্তাহগুলোতে এ ধরনের ভুল হয়ে থাকেসাধারণত এই দুই ধরনের ব্যথায় নিচের পার্থক্যগুলো দেখা যায়—ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন প্রসব ব্যথা ঠিক ব্যথা না বরং পেটে টান লাগার মতো অস্বস্তিকর অনুভূতি হয় ব্যথা হয় হঠাৎ করেই শুরু হয় এই ব্যথা সাধারণত অনিয়মিত হয় কোনো নির্দিষ্ট ছন্দ থাকে না ব্যথার স্থায়িত্ব ও তীব্রতা সাধারণত বাড়ে নাতাই গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় কিংবা তৃতীয় ত্রৈমাসিকে পেট ব্যথা দেখা দিলে যদি এই দুই ধরনের ব্যথার মধ্যে পার্থক্য করতে না পারেন অথবা প্রসবের ব্যথা হচ্ছে বলে মনে হয় তাহলে জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাধারণ পেট ব্যথা নিজে নিজেই সেরে যায় তাই আলাদা করে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না নিচের ঘরোয়া উপদেশগুলো মেনে চলে পেট ব্যথা অনেকটাই কমানো যেতে পারে— ইমপ্ল্যান্টেশন ও রাউন্ড লিগামেন্টের ব্যথাসহ সাধারণ কোনো কারণে পেট ব্যথা হলে শুয়ে থাকুন এবং কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিন এটি পেট ব্যথা ও কামড়ানো কমাতে পারে আপনি যদি বুঝতে পারেন যে আপনার ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন হচ্ছে তাহলে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করুন যেমন দাঁড়িয়ে থাকলে শুয়ে পড়ুনহাঁচিকাশি রাউন্ড লিগামেন্ট এর টান বাড়িয়ে দেয় হাঁচিকাশির সময়ে কোমর কিছুটা বাঁকিয়ে নিলে ব্যথা উপশম হতে পারে সেই সাথে শোয়াবসা থেকে ওঠার সময়ে তাড়াহুড়ো না করে আস্তে ধীরে উঠুন এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় পেটে পরার জন্য কিছু ব্যান্ড বা বেল্ট পাওয়া যায় এগুলো পড়ে দেখতে পারেন এতে রাউন্ড লিগামেন্ট এর ব্যথা প্রশমিত হতে পারে খাদ্যাভ্যাসে পানির পরিমাণ বাড়ান একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেনপর্যাপ্ত পানি পান করার মাধ্যমে ডিহাইড্রেশন কিংবা কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য পেট ব্যথা হলে সেটা কমানো যাবেসারাদিনে অল্প অল্প করে বেশ কয়েকবার খান আঁশ জাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন ভাজা পোড়া খাবার ও কোমল পানীয় (যেমন কোক ফান্টা ও পেপসি) এড়িয়ে চলুনগর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম খাবার পরিপাকে সাহায্য করতে পারে কাজেই নিয়মিত হালকা পরিশ্রম অথবা পছন্দের কোনো ব্যায়াম করতে পারেনযদি ঘরোয়া উপায়েও ব্যথা না কমে তাহলে গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা কমাতে নির্দিষ্ট ডোজ অনুযায়ী প্যারাসিটামল খাওয়া যায় এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ সাধারণত ফার্মেসি থেকে কিনে এনে এর সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করতে পারবেন এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিনতবে পেট ব্যথার সাথে কোনো বিপদজনক লক্ষণ থাকলে অথবা তীব্র পেট ব্যথা হলে অবশ্যই দেরি না করে ডাক্তার দেখিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিতে হবেগর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ব্যথার ঔষধ সেবন করবেন না গর্ভধারণের পর থেকে আপনার খুবই সাধারণ বিষয় ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে যেমন চাবি কোথায় রেখেছেন মনে করতে না পারা চুলা বন্ধ করে এসেছিলেন কি না তা নিয়ে সংশয় হওয়া নিজের ফোন নাম্বার মনে করতে না পারা কিংবা এক জায়গার জিনিস অন্য জায়গায় ফেলে আসাগর্ভধারণের পর থেকে আপনার খুবই সাধারণ বিষয় ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে যেমন চাবি কোথায় রেখেছেন মনে করতে না পারা চুলা বন্ধ করে এসেছিলেন কি না তা নিয়ে সংশয় হওয়া নিজের ফোন নাম্বার মনে করতে না পারা কিংবা এক জায়গার জিনিস অন্য জায়গায় ফেলে আসাএকই সাথে আপনি কাজে বা কথার মাঝে মনোযোগ ধরে রাখতে পারছেন না—এরকম মনোযোগহীনতাও দেখা দিতে পারে সবমিলিয়ে আপনার দৈনন্দিন জীবনের চিন্তা ভাবনা কিছুটা ঘোলাটে কিংবা অগোছালো হয়ে আসতে পারেগর্ভাবস্থায় অনেক নারী এই ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন গবেষণায় দেখা গিয়েছে গর্ভাবস্থা আপনার শরীরের অন্যান্য অংশের মতো আপনার মস্তিষ্কেও প্রভাব ফেলে থাকে আর এর ফলেই সাধারণত এমনটা হয়তাই এরকম হলে হতাশ হবার কোনো কারণ নেই বরং এটি গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন কিছু সাধারণ বিষয় মেনে চললে আপনি এই পরিবর্তনের সাথে সহজে মানিয়ে নিতে পারবেন গর্ভাবস্থার যেকোনো সময়ে আপনার চিন্তা ভাবনা এলোমেলো বা ঘোলাটে হওয়া নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে না পাওয়া নানান বিষয় ভুলে যাওয়া—এরকম সমস্যা হতে পারে তবে গবেষণায় দেখা গেছে গর্ভকালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে এটি বেশি হয় তবে সন্তান প্রসবের পরেও কয়েক মাস এমনটা হতে পারে ছোটো ছোটো বিষয় মনে রাখতে না পারা নিত্য দিনের কাজকর্মে মনোযোগ না থাকা চিন্তা ভাবনায় ঘোলাটে ভাব থাকা—এই সমস্যাগুলো কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি না করলেও বিরক্তি বা হতাশা তৈরি করতে পারে তাই যথাসাধ্য চেষ্টা করুন এই প্রভাবগুলোর সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার এজন্য আপনি যা যা করতে পারেন—১ দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন এই সমস্যাগুলোকে আপনি আপনার অক্ষমতা বা গুরুতর কোনো সমস্যা মনে না করে স্বাভাবিক পরিবর্তন হিসেবে দেখুন নিজেকে চাপমুক্ত রাখুন মানসিক চাপ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন২ দরকারি বিষয়গুলো লিখে রাখুন কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য ভুলে যাওয়ার ফলে যাতে সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য এই তথ্যগুলো কাগজে লিখে রাখুন বাজারের লিস্ট তৈরি করে বাজার করুন ওষুধপত্র ঠিক মতো খাওয়া হচ্ছে কি না তা খেয়াল রাখার জন্য একটি ফর্দ তৈরি করতে পারেনকাগজকলমে না লিখে আপনি আপনার মুঠোফোনও ব্যবহার করতে পারেন যেভাবে সুবিধা হয় সেভাবে আপনার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো রেকর্ড করে রাখুন৩ একটি ব্যাকআপ সিস্টেম তৈরি করুন যেসব বিষয়ে পরিবার পরিজনের সাহায্য নেওয়া যায় সেসব কাজে তাদের সাহায্য নিন নিজের উপর বাড়তি চাপ পড়তে দিবেন না এবং এই বিষয়ে পরিবারের অন্যদের আগে থেকেই সচেতন রাখুন৪ নিজেকে প্রফুল্ল রাখুন ভুলে যাওয়া মনোযোগ হারানো এসব বিষয়ে হতাশ না হয়ে সহজ সাবলীলভাবে বিষয়গুলো গ্রহণ করুন বাড়ির অন্য সদস্যদের সাথে এই বিষয়গুলো নিয়ে রসিকতা করার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন এর ফলে বিরক্তি তৈরি না হয়ে নিজেকে প্রফুল্ল রাখার একটি উপায় বের হতে পারে৫ কোলিনযুক্ত খাবার খেতে পারেন কোলিন একটি উপাদান যা ভিটামিন বা মিনারেলের থেকে আলাদা তবে তাদের মতোই শরীরের নানান ক্রিয়াবিক্রিয়ায় সাহায্য করে গবেষণায় দেখা গেছে যেসব খাবারে বেশি পরিমাণে কোলিন রয়েছে তা আপনার ও আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের জন্য উপকারী হতে পারেগর্ভাবস্থায় রক্তে কোলিনের অভাব থাকলে গর্ভের শিশুর নিউরাল টিউব ডিফেক্ট নামক জটিলতা দেখা দিতে পারে—এমন কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে যদিও এখনো তা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত নয় কলিজা ডিম গরুর মাংস –এসব খাবার কোলিনের ভালো উৎস তবে কলিজায় কোলিন ছাড়াও উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ থাকে আর গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিটামিন এ সেবন গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছেতাই গর্ভাবস্থায় সাধারণত কলিজা খেতে নিরুৎসাহিত করা হয় তবে গর্ভাবস্থায় মাঝেসাঝে (যেমন সপ্তাহে একবার অথবা তার চেয়েও কম) ৫০–৭০ গ্রাম রান্না করা কলিজা খাওয়া গর্ভের শিশুর জন্য তেমন ঝুঁকির কারণ নয় কলিজা গর্ভাবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফলিক এসিড ও আয়রনের ভালো উৎসগর্ভাবস্থায় ভিটামিন এ৬ ওমেগা ৩ যুক্ত খাবার খেতে পারেন এসব খাবার আপনার ও আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং আপনার সন্তানের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠায় সাহায্য করে ওমেগা ৩ যুক্ত খাবারের মধ্যে আছে মাছ – বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ বাদাম মিষ্টিকুমড়ার বিচি সয়াবিন তেল এবং বাজারে মজুদ কৃত্রিমভাবে ওমেগা ৩ যুক্ত ডিম দুধ দই ও জুসনিজেকে প্রস্তুত রাখুন গর্ভাবস্থায় যেমনি আপনার মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি নিয়ে সমস্যা হয়েছে তেমনি সন্তানের জন্ম হওয়ার পরও এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে এর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন গর্ভকালে কেন ও কীভাবে এই পরিবর্তনগুলো হয় তা নিয়ে আরও অনেক কিছু জানার ও বুঝার থাকলেও এর পিছনে কিছু কারণ দাঁড় করানো সম্ভব হয়েছে যেমন—১ গর্ভাবস্থার হরমোন আপনার শরীরের কিছু স্বাভাবিক হরমোন গর্ভকালে অনেক বেড়ে যায় এই হরমোনগুলোই শরীরের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন প্রভাব ফেলে এবং গর্ভাবস্থার বিভিন্ন লক্ষণ ও সমস্যার জন্য দায়ী ধারণা করা হয় এই হরমোনগুলোর প্রভাবে আপনার স্মৃতিশক্তি কিছুটা দুর্বল হতে পারে এবং মনমেজাজ বিক্ষিপ্ত থাকতে পারে২ পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব যদিও ধারণা করা হচ্ছে গর্ভাবস্থা আপনার মস্তিষ্কে নানান পরিবর্তন আনে তবে দৈনন্দিন জীবনের কিছু পরিবর্তনও আপনার ভুলে যাওয়া অথবা মনোযোগ হারানোর জন্য দায়ী থাকতে পারে বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় নানান কারণে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়ার কারণে আপনার কাজকর্মে দক্ষতা কিছুটা কমে আসতে পারে ঘুম কম হওয়ার কারণে আপনার মনমেজাজ খারাপ থাকার সম্ভাবনাও বেশি থাকে সন্তানের যত্ন নেওয়ার জন্য সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পরও ঘুমের এরকম সমস্যা থাকতে পারে৩ দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ অনেক গর্ভবতী নারীর নতুন মাতৃত্ব নতুন সন্তানের ভূমিষ্ঠ হওয়া—এরকম নানান বিষয়ে উৎকণ্ঠা থাকে গর্ভাবস্থার পরও এরকম মানসিক চাপ থেকে যেতে পারে এর প্রভাবে আপনার মনোযোগ হারানোর প্রবণতা ভুলে যাওয়া কাজকর্মে আগ্রহ হারানো—এরকম নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে গর্ভাবস্থায় আবেগ ও অনুভূতি অনেক ওঠানামা করে দেখা গেল যেকোনো মুহূর্তে আপনি হাসছেন আবার পর মুহূর্তেই আপনি কাঁদছেন আপনার আবেগ এমন দ্রুত পরিবর্তনকে সহজ কথায় মুড সুইং বলেগর্ভাবস্থায় আবেগ ও অনুভূতি অনেক ওঠানামা করে দেখা গেল যেকোনো মুহূর্তে আপনি হাসছেন আবার পর মুহূর্তেই আপনি কাঁদছেন আপনার আবেগ এমন দ্রুত পরিবর্তনকে সহজ কথায় মুড সুইং বলেপ্রায় প্রত্যেক গর্ভবতী নারীই এমন অনুভূতির মধ্য দিয়ে যান তবে এ ধরনের মুড সুইং অনেক ক্ষেত্রেই সাময়িক এবং গর্ভাবস্থার জন্য ক্ষতিকর নয় গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের বেশ কিছু শারীরিক শারীরবৃত্তিক ও মানসিক পরিবর্তন আসে এসব গর্ভাবস্থাজনিত কারণের প্রভাবেই আপনার মুড সুইং হতে পারে যেমন—প্রথম ত্রৈমাসিকেহরমোন এর ওঠানামা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায় এস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন এমন কিছু হরমোন যেগুলো স্বাভাবিক সময়ে শরীরে থাকলেও গর্ভাবস্থায় এসবের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায় এসব হরমোনের প্রভাবে এসময় মায়েদের মুড সুইং হতে পারে ক্লান্তি ও পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব গর্ভাবস্থায় বিশেষ করে প্রথম ত্রৈমাসিকে আপনি যতই ঘুমান না কেন আপনার বেশ ক্লান্ত লাগবে এতে আপনার দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে এর ফলেও আপনার মুড সুইং হতে পারে মর্নিং সিকনেস ধারণা করা হয় যে গর্ভাবস্থায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নারীই মর্নিং সিকনেস এ ভুগে থাকেনমর্নিং সিকনেস আপনার শরীরের বেশ কিছু শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক পরিবর্তনও আনতে পারে বমি বমি ভাবের কারণে শারীরিক অস্বস্তি তৈরি হলে তা আপনার মানসিক অবস্থা বা মুড কেও প্রভাবিত করতে পারে ফলে দেখা দিতে পারে মুড সুইংদ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেশারীরিক পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় শরীরের পরিবর্তন অনেক গর্ভবতী মা উপভোগ করলেও অনেক মা নিজের শরীরের পরিবর্তনকে মেনে নিতে পারেন না এ থেকেও অনেকসময় মনমেজাজের পরিবর্তন বা মুড সুইং হতে পারে বিশেষত যে সব মায়েরা জীবনের কোনো সময় শারীরিক গঠন নিয়ে কটু কথা শুনেছেন বা কোনো কারণে শারীরিক গঠন নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগেছেন তাদের গর্ভাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তনের প্রভাবে মুড সুইং হতে পারে[গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গর্ভের শিশুর অনেক ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় এসব পরীক্ষার ফলাফল নিয়েও অনেক মায়েরা দুশ্চিন্তা করেন এ থেকেও মুড সুইং হতে পারেতৃতীয় ত্রৈমাসিকেদুশ্চিন্তা অনেকসময় প্রথম বারের মতো মা হওয়া নিয়ে অথবা প্রথম শিশুর সাথে অনাগত শিশুর সম্পর্ক নিয়ে অনেক মা দুশ্চিন্তা করে থাকেন পাশাপাশি প্রসব বা ডেলিভারি নিয়েও অনেক মা ভয়ে থাকেন এসব ভীতি ও দুশ্চিন্তা থেকেও আপনার মুড সুইং হতে পারে মুড সুইং গর্ভাবস্থার জন্য খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা তারপরও এটি আপনার দৈনন্দিন কাজে হয়তো কিছুটা ব্যাঘাত ঘটাতে পারে নিচের কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করে আপনি মুড সুইং এর সমস্যা অনেকটাই এড়িয়ে চলতে পারেন—১ স্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া করুন আপনি যখন ক্ষুধার্ত থাকবেন তখন স্বাভাবিকভাবেই আপনার মনমেজাজ কিছুটা বিক্ষিপ্ত থাকতে পারে কাজেই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন কোনো বেলার খাবার বাদ দিবেন না এতে করে আপনার মস্তিষ্ক প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে এবং ফলে মনমেজাজও ঠান্ডা থাকবে২ পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়াম করুন ব্যায়ামকে অনেকসময় স্ট্রেস রিলিভার ও মুড বুস্টার বলা হয় আপনার গর্ভাবস্থায় মুড সুইং কিংবা মন খারাপ হলে হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করলে আপনার ভালো লাগতে পারে হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করতে ঘরের বাইরে বের হলে বাইরের আলো বাতাস আপনার মনকে প্রশান্তি দিবেব্যায়াম আমাদের শরীরে বিভিন্ন স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এর পাশাপাশি ব্যায়াম এর ফলে আপনার শরীর থেকে এন্ডোরফিন নামের হরমোন নির্গত হয় এই হরমোন প্রাকৃতিকভাবে পেইনকিলার হিসেবে কাজ করে আর মুড ভালো করতে সহায়তা করে তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম আপনার মন ভালো রাখতে সহায়তা করবে৩ শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম আমাদের মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এই ব্যায়ামটি শুয়ে চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারেব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেনশুয়ে থাকলে পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন হাতের তালু ওপরের দিকে অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুন চেয়ারে বসে থাকলে দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন দাঁড়িয়ে থাকলে পা দুটো সমানভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে ফাঁকা জায়গা রেখে আরামদায়ক ভাবে বসুনএবার লম্বা করে শ্বাস নিন খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিনতারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তেনিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিন আর শ্বাস ছাড়ুন তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন৪ ঘুমকে প্রাধান্য দিন গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় ঘুম শরীরের জন্য অপরিহার্য একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক ৭–৯ ঘন্টা ঘুমকে আদর্শ ধরা হয়এর চেয়ে কম ঘুম হলে সেটি আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে একটানা বেশিক্ষণ ঘুমোতে সমস্যা হলে রাতের ঘুমের পাশাপাশি প্রয়োজনে দিনের বেলাও কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারেনচেষ্টা করুন ঘুমের একটি রুটিন মেনে চলতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করবেন খুব বেশি অথবা খুব কম না ঘুমিয়ে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন ঘুমানোর জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি করুন ঘুমাতে যাওয়ার আগে চাকফি বা ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুনগর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় ও খাবার খাওয়া উচিত নয় অতিরিক্ত ক্যাফেইন খেলে সেটি গর্ভের শিশুর ওজন কম হওয়া এবং সময়ের আগে জন্মানোসহ নানান ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারেপ্রিয়জনের সাথে কথা বলুন আপনার পরিবার ও কাছের মানুষের সাথে নিজের অনুভূতি সম্পর্কে কথা বলুন তাদের জানান আপনি কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন আপনার মুড সুইং জনিত পরিবর্তনের জন্য তাদের আগে থেকেই জানান প্রয়োজনে আপনার পরিচিত অন্য গর্ভবতী মায়েদের সাথে কথা বলুনমর্নিং সিকনেস এর জন্য প্রস্তুত থাকুন গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস এমন একটি সমস্যা যা কোনো সতর্ক ছাড়াই চলে আসে তাই এটির জন্য প্রস্তুত থাকুন সবসময় নিজের সাথে একটা পলিথিন ব্যাগ রাখুন কোনো গন্ধ বা খাবার যদি আপনাকে ট্রিগার করে সেটি এড়িয়ে চলুন গর্ভাবস্থায় ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করেও মুড সুইং থেকে প্রতিকার না পেলে এবং নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখা গেলে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন—আপনি বিষণ্ণতা বোধ করলে আপনার ঘুমাতে সমস্যা হলে আপনার খেতে সমস্যা হলে আপনার দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন ঘটলে আপনার মুড সুইং এর সমস্যা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বাড়তে থাকলে গর্ভাবস্থায় অনেকেরই যোনি বা মাসিকের রাস্তায় চুলকানি হয় গর্ভকালীন নানান শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে শরীরের অন্যান্য অংশের পাশাপাশি যোনিপথে এমন চুলকানি হতে পারে তবে কখনো কখনো এই চুলকানি যোনিপথে ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় অনেকেরই যোনি বা মাসিকের রাস্তায় চুলকানি হয় গর্ভকালীন নানান শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে শরীরের অন্যান্য অংশের পাশাপাশি যোনিপথে এমন চুলকানি হতে পারে তবে কখনো কখনো এই চুলকানি যোনিপথে ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারেএই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় যোনিপথে চুলকানির বিভিন্ন কারণ ইনফেকশন চেনার উপায় ও ঘরোয়া চিকিৎসা তুলে ধরা হয়েছে গর্ভাবস্থায় চুলকানির সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—হরমোনগত পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের হরমোনগুলো ওঠানামা করে এতে যোনিপথের স্বাভাবিক পরিবেশে পরিবর্তন আসে এসব পরিবর্তন যোনিপথকে স্পর্শকাতর করে তোলে কারও কারও ক্ষেত্রে যোনিপথ শুষ্ক হয়ে ওঠে এসব কারণে যোনিতে চুলকানি হতে পারে ঘাম গর্ভাবস্থার প্রভাবে যোনিপথে ঘাম হতে পারে এই ঘাম যোনিপথ ও এর আশেপাশের ত্বকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে তা থেকে এরকম চুলকানি হতে পারে বিশেষ করে বাতাস চলাচল করতে পারে না এমন অন্তর্বাস পরলে ঘাম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এই স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে ঘাম থেকে যোনিতে চুলকানি—এমনকি ইনফেকশন হতে পারে যৌনাঙ্গের চুল গর্ভাবস্থায় যৌনাঙ্গের চুল বড় হয়ে গেলে তার সাথে আশেপাশের ত্বকের ঘর্ষণ হতে পারে৷ বিশেষ করে আঁটসাঁট প্যান্ট বা অন্তর্বাস পরলে এমন ঘর্ষণের সম্ভাবনা বাড়ে এখান থেকে চুলকানি হতে পারে বিভিন্ন প্রসাধনীতে স্পর্শকাতরতা গর্ভাবস্থায় যৌনাঙ্গ ও যোনিপথ বেশি স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে একারণে কিছু ডিটারজেন্ট সাবান ও বডি ওয়াশের সংস্পর্শে আসলে সেখানে চুলকানি হতে পারে ঔষধ কিছু ঔষধ সেবনের ফলে আপনার যৌনাঙ্গ শুষ্ক হয়ে যেতে পারেএর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিহিস্টামিন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট জাতীয় কিছু ঔষধ যৌনাঙ্গ শুষ্ক হয়ে গেলে সেখানে চুলকানি হতে পারে অতিরিক্ত সাদা স্রাব গর্ভাবস্থায় সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি সাদা স্রাব যাওয়া স্বাভাবিক এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই এই স্রাব যোনিপথকে ইনফেকশন থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে তবে কারও কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত স্রাবের সংস্পর্শে যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হতে পারে ফলে সেখানে চুলকানি হতে পারেসমাধানএখানে কিছু সহজ ও কার্যকর ঘরোয়া উপদেশ তুলে ধরা হয়েছে এসব উপদেশ গর্ভকালীন যোনিপথের সাধারণ চুলকানি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারেঠাণ্ডা সেঁকভেজা কাপড় ও বরফ চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে এজন্য বরফ এক টুকরা মোটা সুতি কাপড়ে মুড়িয়ে যৌনাঙ্গের যে স্থানে চুলকাচ্ছে সেখানে সেঁক দিতে পারেন এভাবে ৫–১০ মিনিট আলতো করে চেপে ধরে রাখুন এতেও কাজ না হলে চুলকানি না কমা পর্যন্ত এভাবে আরও কিছুক্ষণ ধরে রাখতে পারেননরম সুতি কাপড়এসময়ে সুতির পাতলা অন্তর্বাস পরলে আরাম পেতে পারেন সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা অন্তর্বাস পরলে ভালো হয় খুব টাইট বা আঁটসাঁট অন্তর্বাস ও পায়জামা না পরাই ভালোচুলকানোর বিকল্প নিয়মচুলকানির তাড়না আসলে সেটি দমিয়ে রাখা কঠিন কিন্তু চুলকানি ওঠা স্থানে চুলকালে কয়েক মুহূর্ত আরাম লাগলেও তা চুলকানির তাড়নাকে বাড়িয়ে দেয় এরপর আবার চুলকাতে ইচ্ছে করে এভাবে অনেক ক্ষেত্রেই চুলকানি একটা চক্রের মতো চলতে থাকে তা ছাড়া চুলকানোর ফলে ত্বকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষত সৃষ্টি হয় এসবের ভেতর দিয়ে জীবাণু ঢুকে ত্বকে ইনফেকশন ঘটাতে পারেতাই চুলকানি উঠলেও যৌনাঙ্গ ও যোনিপথ না চুলকানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন চুলকানোর পরিবর্তে আঙুলের ত্বক দিয়ে চুলকানি ওঠা স্থানটি আলতো করে চেপে চেপে নিতে পারেন আঘাত ও ইনফেকশন এড়াতে নখ ছোটো করে কেটে নিন এবং সবসময় মসৃণ ও পরিষ্কার রাখুনমেনথলযুক্ত ক্রিমলোশনযৌনাঙ্গের বাইরের অংশে মেনথল অথবা ক্যালামাইনযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এগুলো গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা নিরাপদ এবং চুলকানি থেকে কিছুটা আরাম দিতে পারেবেকিং সোডাবেকিং সোডা যৌনাঙ্গের জ্বালাপোড়া ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে এজন্য একটা বড় গামলায় কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে ১–২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন এবার গামলায় এমনভাবে বসুন যেন আপনার পা দুটো ফাঁকা হয়ে থাকে এবং সোডা মেশানো পানি যৌনাঙ্গের সংস্পর্শে যায় এভাবে ১০ মিনিট ধরে বসে থাকুন দিনে দুইবার করে পর পর কয়েকদিন এভাবে বসতে পারেনযৌনাঙ্গ ও যোনিপথের পরিচ্ছন্নতাযোনিপথের ভেতরের অংশ পরিষ্কার রাখার জন্য শরীরের নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে এক্ষেত্রে বাইরে থেকে আলাদা কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয় না বরং সুগন্ধি সাবান কিংবা অন্য কিছু দিয়ে পরিষ্কার করতে গেলে হিতে বিপরীত হয়ে ইনফেকশন হতে পারে তাই নিজে নিজে আলাদা করে যোনিপথের ভেতরে পরিষ্কারের চেষ্টা করবেন নাযোনিপথ সুস্থ ও জীবাণুমুক্ত রাখতে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন—ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় ছত্রাক সহজে বংশবৃদ্ধি করে তাই যৌনাঙ্গ সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন যোনিপথের বাইরের অংশটুকু পানি ও সাধারণ সাবান দিয়ে ধোয়ার পরে ভালোমতো শুকিয়ে নিন কাপড় ভিজে গেলে (যেমন সাঁতারের অথবা ব্যায়ামের পর) তা দ্রুত পাল্টে ফেলুন পায়খানা শেষে পরিষ্কারের সময়ে সামনে থেকে পেছনের দিকে মুছে নিন অর্থাৎ যোনির দিক থেকে পায়ুর দিকে পরিষ্কার করুন৷ এটি পায়ুপথ থেকে যোনিতে ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করবে যোনিপথে সুগন্ধি সাবান শাওয়ার জেল বিশেষ ওয়াশ কিংবা ডুশ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন সুগন্ধি ওয়েট টিস্যু অথবা পারফিউমও ব্যবহার করবেন না ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ব্যবহার করবেন না শিডিউল অনুযায়ী নিয়মিত ভায়া (VIA) পরীক্ষা করুনসহনীয় তাপমাত্রার পানিবেশি গরম পানি ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে যা থেকে চুলকানি হতে পারে এজন্য যৌনাঙ্গে গরম পানির ব্যবহার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন গোসল ও যৌনাঙ্গ পরিষ্কারের সময়ে কুসুম গরম অথবা স্বাভাবিক তাপমাত্রার কিংবা একটু ঠাণ্ডা পানি বেছে নিনময়েশ্চারাইজারশুষ্ক ত্বকের চুলকানি অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে শরীরে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা ধরে রাখার মাধ্যমে শুষ্কতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য আপনি যৌনাঙ্গের বাইরের অংশে ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন এক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম অথবা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করতে পারলে বেশি ভালো হয়হাতের কাছে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম না পেলে ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করতে পারেন সুগন্ধিবিহীন ময়েশ্চারাইজারগুলো বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন কারণ অনেকসময় সুগন্ধী প্রসাধনসামগ্রী চুলকানি রিঅ্যাকশন ঘটিয়ে চুলকানি বাড়িয়ে দিতে পারেসাধারণ ময়েশ্চারাইজার কেবল যৌনাঙ্গের বাইরের অংশে ব্যবহার করবেন যোনিপথে বা যৌনাঙ্গের ভেতরের অংশে ব্যবহারের জন্য যেসব বিশেষ ময়েশ্চারাইজার বানানো হয় তা আমাদের দেশে সবসময় সহজে পাওয়া যায় না এমন ক্ষেত্রে কোন ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন তা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিনকনডম ও লুব্রিকেন্টকনডম যৌনবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে সাহায্য করে তাই সাধারণ অবস্থার মতো গর্ভাবস্থাতেও যৌনমিলনের সময়ে কনডম ব্যবহার করুনএ ছাড়া যোনি শুষ্ক হয়ে থাকলে চুলকানি হতে পারে সেক্ষেত্রে যৌনমিলনের সময়ে লুব্রিকেন্ট বা পিচ্ছিলকারক ব্যবহার করতে পারেনমানসিক চাপ মোকাবেলামানসিক চাপ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন মানসিক চাপ চুলকানি বাড়িয়ে দিতে পারেঅ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সতর্কতাঅযাচিতভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে কাজেই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা থেকে বিরত থাকুন চিকিৎসক আপনাকে অ্যান্টিবায়োটিক দিলে সঠিক ডোজে পর্যাপ্ত সময় সেবন করে ডোজ সম্পন্ন করুনঘরোয়া চিকিৎসা শুরু করার পরও চুলকানি না কমলে অস্বস্তি হলে অথবা যৌনাঙ্গে ইনফেকশনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা করবেন এবং ইনফেকশন থাকলে সেই অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা দিবেনসময়মতো ইনফেকশনের চিকিৎসা না করলে তা মা ও গর্ভের শিশু উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে৷ ইনফেকশন নিয়ে আর্টিকেলের পরবর্তী অংশে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে সাধারণ কারণগুলো ছাড়াও বিভিন্ন ইনফেকশন অথবা জটিলতা থেকে আপনার যোনিপথে চুলকানি হতে পারে এসব ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই যোনিপথের স্রাবে অস্বাভাবিকতা দেখা যায় যেমন—ধূসর স্রাব—ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিসকোনো কারণে যোনিপথে থাকা জীবাণুগুলোর ভারসাম্যে পরিবর্তন হলে যোনিপথের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায় তখন এই সমস্যা দেখা দিতে পারে একে ডাক্তারি ভাষায় ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস বলে এটি কোনো যৌনবাহিত রোগ নয় তবে যৌন সহবাস করলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারেগর্ভাবস্থায় যোনিপথের পরিবেশে পরিবর্তন হয় বলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে এক্ষেত্রে যোনিপথে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে—পাতলা ও ধূসর রঙের স্রাব যাওয়া স্রাব থেকে অনেকটা পচা মাছের মতো দুর্গন্ধ হওয়া বিশেষ করে সহবাসের পরে এমন দুর্গন্ধ হয়[৮] কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হওয়া তবে এই রোগে সাধারণত এমন হয় নাছবি ধূসর স্রাবঝুঁকিগর্ভাবস্থায় ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস হলে চিকিৎসা করানো জরুরি কেননা গর্ভাবস্থায় এই রোগ হলে অকাল প্রসব এবং কম ওজনের সন্তান প্রসবের ঝুঁকি থাকে[১০] তাই সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করানো খুব গুরুত্বপূর্ণতা ছাড়া এই রোগ এইচআইভি ও অন্যান্য যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয় এসব থেকে আপনার পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ হবার সম্ভাবনা থাকে যা আপনার পরবর্তী গর্ভধারণকে কঠিন করে তুলতে পারেকরণীয় এই রোগের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন ডাক্তার আপনাকে গর্ভাবস্থার জন্য উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারেন এক্ষেত্রে মুখে খাওয়ার ট্যাবলেট কিংবা মাসিকের রাস্তায় দেওয়ার ক্রিম অথবা জেল ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে সেই সাথে—যোনিপথের পরিচ্ছন্নতার উপদেশগুলো মেনে চলুন সহবাসের সময়ে সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার করুন একাধিক যৌন সঙ্গীর সাথে সহবাস এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন সাদা রঙের চাকা চাকা স্রাব—ফাঙ্গাল ইনফেকশনগর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনসহ কিছু কারণে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায় এটি অনেকের কাছে ঈস্ট ইনফেকশন নামেও পরিচিতএক্ষেত্রে অস্বাভাবিক ধরনের সাদা স্রাব হতে পারে এসময়ে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে—অতিরিক্ত পরিমাণে দই অথবা পনিরের মতো সাদা ও চাকা চাকা স্রাব যাওয়া স্রাবে সাধারণত গন্ধ থাকে না যোনিপথের আশেপাশে প্রচুর চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হওয়া প্রস্রাব ও সহবাসের সময়ে ব্যথা কিংবা অস্বস্তি হওয়াছবি সাদা রঙের চাকা চাকা স্রাবছবি সাদা রঙের চাকা চাকা স্রাবঝুঁকিযোনিপথে কোনো কারণে উপকারী জীবাণুর সংখ্যা কমে গিয়ে এক ধরনের ফাঙ্গাসের সংখ্যা বেড়ে গেলে এই রোগ দেখা দিতে পারেগর্ভাবস্থায় যোনিপথের পরিবেশে পরিবর্তন আসার ফলে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় অন্যান্য যেসব বিষয় এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে—ডায়াবেটিস থাকলে গর্ভধারণের আগে হরমোনযুক্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল বা বড়ি সেবন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে কোনো অসুস্থতার জন্য সম্প্রতি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে থাকলে অ্যান্টিবায়োটিক মাসিকের রাস্তার ভালো জীবাণুকে মেরে ফেলতে পারে সেই সুযোগে ফাঙ্গাস অনেক বংশবিস্তার করলে এই রোগ দেখা দিতে পারেগুরুতর ক্ষেত্রে ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে আপনার যোনিপথ ফুলে যেতে পারে এবং সেখানে ক্ষত হতে পারে ক্ষত থেকে অন্য ইনফেকশনের ঝুঁকিও বাড়তে পারেকরণীয়গর্ভাবস্থায় ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে ভয়ের কিছু নেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসা নিলে এটি সহজেই সেরে যায় এক্ষেত্রে ডাক্তার মাসিকের রাস্তায় ঢোকানোর ঔষধ বা ক্রিম দিতে পারেন সাধারণত চিকিৎসা শুরু করার ১–২ সপ্তাহের মধ্যেই এই ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন সেরে যায়উল্লেখ্য সব ধরনের অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয় যেমন গর্ভাবস্থায় মুখে খাওয়ার কিছু অ্যান্টিফাঙ্গাল (যেমন ফ্লুকোনাজোল) সেবনের ফলে গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটির আশঙ্কা থাকে তাই নিজে নিজে ঔষধ কিনে চিকিৎসা শুরু করবেন না ডাক্তারকে অবশ্যই আপনার গর্ভাবস্থা সম্পর্কে অবগত করবেনঅ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসার পাশাপাশি পুনরায় ইনফেকশন হওয়া প্রতিরোধে যোনিপথের পরিচ্ছন্নতার উপদেশগুলো মেনে চলুনযৌনবাহিত ইনফেকশনকিছু যৌনবাহিত ইনফেকশন হলে যোনিপথে চুলকানি হতে পারে যেমন গনোরিয়া ক্ল্যামিডিয়া ও ট্রিকোমোনায়াসিস এসব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে কনডম জাতীয় সুরক্ষা ছাড়া সহবাস করলে আপনার মধ্যেও এগুলো ছড়িয়ে পড়তে পারে কিছু যৌনবাহিত রোগ মা ও গর্ভের শিশুর বিভিন্ন মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে তাই এমন ইনফেকশনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরিযৌনবাহিত রোগে যোনিপথে চুলকানির পাশাপাশি যেসব লক্ষণ থাকতে পারে—অস্বাভাবিক গন্ধ কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব সবুজ হলুদ লালচে অথবা ধূসর রঙের স্রাব যোনিপথের আশেপাশে ব্যথা অথবা চুলকানি প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হওয়া যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হওয়া বা লালচে হয়ে যাওয়াছবি সবুজ ও হলুদের মিশ্র রঙের স্রাব ছবি সবুজ রঙের স্রাবছবি হলুদ রঙের স্রাব ছবি লালচে রঙের স্রাবঝুঁকিযৌনবাহিত ইনফেকশন আপনার জরায়ুসহ প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন জায়গায় ইনফেকশন ঘটাতে পারে সেখান থেকে নানান দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারেগর্ভাবস্থায় গনোরিয়া ও ক্ল্যামিডিয়ার মতো ইনফেকশন হলে গর্ভের শিশুর নানান মারাত্মক জটিলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে গর্ভের শিশুর অকাল প্রসব কম ওজন নিয়ে জন্মানো সময়ের আগে গর্ভবতীর পানি ভেঙে যাওয়া ও গর্ভপাতের মতো মারাত্মক জটিলতার সাথে এসব যৌনবাহিত ইনফেকশনের সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছেকরণীয়যৌনবাহিত ইনফেকশনের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডাক্তার আপনাকে গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ এমন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরামর্শ দিবেন৷এসব ইনফেকশন সহবাসের মাধ্যমে ছড়ায় তাই আপনার পাশাপাশি আপনার সঙ্গীরও চিকিৎসা করানো জরুরি সঙ্গীর ইনফেকশনের চিকিৎসা না করলে তার কাছ থেকে পুনরায় আপনার ইনফেকশন হতে পারে এ ছাড়া চিকিৎসার পরও বিশেষ করে কনডম ছাড়া সহবাস করলে পুনরায় এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই কনডম ব্যবহারের মতো নিরাপদ শারীরিক সম্পর্কের নিয়ম মানা গুরুত্বপূর্ণ প্রসবের সময় হয়েছে কি না তা বোঝার কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো যোনিপথে মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসামিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসা মানেই প্রসব শুরু হয়ে যাচ্ছে এমনটা নয় তবে এটি চিনতে পারা প্রসবের প্রস্তুতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণপ্রসবের সময় হয়েছে কি না তা বোঝার কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো যোনিপথে মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসামিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসা মানেই প্রসব শুরু হয়ে যাচ্ছে এমনটা নয় তবে এটি চিনতে পারা প্রসবের প্রস্তুতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মিউকাস প্লাগ বলতে জেলির মতো ঘন স্রাবের একটি থোকাকে বুঝায় যা গর্ভাবস্থায় আপনার জরায়ুমুখে জমা হয় এবং এর বাইরের মুখটিকে বন্ধ করে রাখেএই স্রাবের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে যা একে স্বাভাবিক স্রাবের চেয়ে আলাদা করেআপনার সন্তান জরায়ুর ভেতর মোটামুটি জীবাণুমুক্ত একটি পরিবেশে বড় হয় মিউকাস প্লাগের কাজ হলো যোনি বা এর বাইরের জীবাণু ও ইনফেকশন থেকে জরায়ুমুখকে এবং সেই সাথে গর্ভের সন্তানকে সুরক্ষা দেওয়াএই মিউকাস প্লাগ এমনভাবে তৈরি যাতে এটি গর্ভের ভেতরে জীবাণুর বিস্তার প্রতিরোধ করতে পারে এবং জরায়ুমুখ দিয়ে জীবাণু প্রবেশে বাঁধা দিতে পারে এসব জীবাণু গর্ভে প্রবেশ করলে গর্ভের শিশুর অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়াতে পারে গবেষণায় দেখা যায় প্রায় ২৫ শতাংশ অকাল প্রসবের পেছনে এধরণের ইনফেকশন ভূমিকা রাখে সন্তান প্রসবের জন্য যখন জরায়ুমুখ প্রসারিত হতে বা বড় হতে শুরু করে তখন আপনার স্রাবের থোকা বা মিউকাস প্লাগ যোনিপথে বের হয়ে আসে সাধারণত গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহের পর জরায়ুমুখ প্রসারিত হতে শুরু করে তাই সাধারণত গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহের পর জরায়ুমুখে থাকা মিউকাস প্লাগ প্রসবের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে আসেতবে মিউকাস প্লাগ বের হওয়ার পর প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হতে আরও অনেক সময় লাগতে পারে আবার কারো ক্ষেত্রে প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরও মিউকাস প্লাগ বের হতে পারে তবে কোনো কারণে ৩৭ সপ্তাহের আগে যোনিপথে মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসলে তা অকাল প্রসবের লক্ষণ হতে পারে তাই এমনটা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে গর্ভাবস্থায় মিউকাস প্লাগ যেসব কারণে বের হয়ে যেতে পারে তার মধ্যে রয়েছে—জরায়ুমুখের প্রসারণ প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসলে জরায়ুমুখ প্রসারিত হতে শুরু করে জরায়ুমুখের প্রসারণের সাথে সাথে মিউকাস প্লাগ জরায়ুমুখ থেকে নেমে যোনিতে চলে আসে ফলে যোনিপথে নির্গত স্রাবের পরিমাণ হঠাৎ স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায় আবার অনেকের ক্ষেত্রে পুরো মিউকাস প্লাগ বা স্রাবের থোকাটি একবারেই বেরিয়ে আসতে পারেজরায়ুমুখের অস্বাভাবিকতা বা সার্ভাইকাল ইনসাফিশিয়েন্সি আপনার জরায়ু কিংবা জরায়ুমুখে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা থাকলে তা অনেকসময় জরায়ুর ভেতরে ফিটাস বা শিশুটিকে ধরে রাখতে পারে না এমন অবস্থায় জরায়ুমুখে থাকা মিউকাস প্লাগ কিংবা জরায়ুর ভেতরে থাকা শিশু অনেকসময় সময়ের আগেই বেরিয়ে আসতে পারেসহবাস গর্ভাবস্থায় সহবাস ক্ষতিকর নয় তবে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে সহবাসের ফলে মিউকাস প্লাগ ছুটে আসার আশঙ্কা থাকে ৩৭ সপ্তাহের পরে মিউকাস প্লাগ বের হয়ে আসলে সেটি সাধারণত কোনো সমস্যা তৈরি করে না তবে তার আগে হয়ে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবেজরায়ুমুখের পরীক্ষা গর্ভাবস্থায় জরায়ুমুখ পরীক্ষা করার সময় অসাবধানতাবশত কখনো কখনো স্রাবের থোকা বেরিয়ে আসতে পারে তবে সচরাচর এমনটা হয় না তাই এ নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই মিউকাস প্লাগ দেখতে কিছুটা স্বাভাবিক স্রাবের মতো এর রঙ পানির মতো পরিষ্কার অথবা সাদা কিংবা হলদে হতে পারে তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি হালকা গোলাপিও হতে পারে অথবা সাদার সাথে কিছুটা লালচে ভাব থাকতে পারে এর কারণ হলো জরায়ুমুখ প্রসারিত হতে শুরু করলে অনেকসময় কিছুটা রক্তপাত হতে পারে যা এর সাথে মিশে যায়তবে হালকা লালচে অথবা গোলাপি ভাবের পরিবর্তে যদি স্রাব টকটকে লাল হয়ে থাকে বা বেশি রক্ত মিশ্রিত বলে মনে হয় সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে রক্ত বের হওয়া গুরুতর কোনো সমস্যার (যেমন গর্ভফুলের অকাল ছুটে আসার বা প্ল্যাসেন্টাল এবরাপশন) লক্ষণ হতে পারেকিছু গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে একসাথে পুরো মিউকাস প্লাগ বের হয়ে আসে আবার অনেকের ক্ষেত্রে স্রাব সময় নিয়ে ধীরে ধীরে বের হয় যার ফলে অনেকে মিউকাস প্লাগ বের হওয়ার বিষয়টা খেয়াল নাও করতে পারেন তবে এতে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই আপনার গর্ভাবস্থার পুরো সময় জুড়েই যোনিপথ দিয়ে কিছু স্রাব বের হওয়াটা স্বাভাবিক এই স্রাব সাধারণত পাতলা ও সাদা বা হলদে হয়ে থাকে অন্যদিকে মিউকাস প্লাগ যা প্রসব প্রক্রিয়ায় জরায়ুমুখ বড়ো হওয়ার ফলে বের হয় সেটি অনেক ঘন হবে এবং পরিমাণেও বেশি হবে যদি গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহের পর স্রাবের থোকা বের হয় তাহলে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই মিউকাস প্লাগ বের হওয়ার কয়েক দিন অথবা সপ্তাহ পরে সক্রিয় প্রসব শুরু হতে পারে আবার প্রসব প্রক্রিয়ার মধ্যেই মিউকাস প্লাগ বের হয়ে আসতে পারে তাই শান্ত ও সচেতন থেকে অপেক্ষা করাই শ্রেয়মিউকাস প্লাগ বের হয়ে যাওয়ার পরেও আপনার জরায়ুমুখে স্রাব তৈরি হতে থাকে যা গর্ভের সন্তানের সুরক্ষা অটুট রাখে তাই এমন অবস্থায় আপনি স্বাভাবিক জীবনযাপন—এমনকি সহবাসও করতে পারেনতবে মিউকাস প্লাগের রঙ গন্ধ ও ঘনত্ব খেয়াল করতে হবে যদি স্রাবের রঙ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি লাল হয়ে থাকে সেটা যোনিপথে রক্তক্ষরণের লক্ষণ হতে পারে আবার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলুদ অথবা সবুজ কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত হলে সেটি ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে গর্ভাবস্থায় অনেকেরই পায়ে পানি আসে অথবা মুখ ফুলে যায় এগুলো সাধারণত গর্ভাবস্থার কমন সমস্যা এবং তেমন কোনো জটিলতা সৃষ্টি করে না তবে পা ফুলে যাওয়া কখনো কখনো ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস নামক রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় অনেকেরই পায়ে পানি আসে অথবা মুখ ফুলে যায় এগুলো সাধারণত গর্ভাবস্থার কমন সমস্যা এবং তেমন কোনো জটিলতা সৃষ্টি করে না তবে পা ফুলে যাওয়া কখনো কখনো ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস নামক রোগের প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারেএটি একটি মারাত্মক সমস্যা যা থেকে প্রাণঘাতী জটিলতা তৈরি হতে পারে এই রোগের লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যেতে হবে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস বা ডিভিটি হচ্ছে একটি মারাত্মক রোগ যেখানে আপনার রক্তনালীগুলোতে বিশেষ করে পায়ের গভীর শিরাতে রক্ত জমাট বেঁধে যায় পা ছাড়াও পেলভিস বা শ্রোণিদেশ এবং হাতে ডিভিটি হতে পারেএটি গর্ভাবস্থায় খুব একটা কমন সমস্যা নয় প্রতি হাজারে মাত্র ২–১ নারীর মধ্যে এই সমস্যাটি দেখা দেয়তবে গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী ৪ থেকে ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত অন্যদের তুলনায় মায়েদের ডিভিটি হওয়ার ঝুঁকি প্রায় পাঁচ গুণ বেশি থাকে গর্ভকালীন সময়ে নারীদেহে রক্ত সহজে জমাট বাঁধার প্রবণতা দেখা দেয় যাতে পরবর্তীতে প্রসবকালীন সময়ে রক্তক্ষরণ কম হয় আবার পেটে বাচ্চা বড় হওয়ার সাথে সাথে পেলভিস বা শ্রোণিদেশে চাপ বাড়তে থাকে ফলে পায়ে রক্ত চলাচল কমে যায়[৫]এ ছাড়া এ সময়টায় তুলনামূলক বেশি বিশ্রামে থাকতে হয় এসব কারণে গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত নারীদের ডিভিটি এর ঝুঁকি বেশি থাকে ডিভিটি এর লক্ষণগুলো সাধারণত যেকোনো এক পায়েই প্রকাশ পায় তবে অনেকসময় দুই পায়েও লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেহেতু গর্ভাবস্থায় পা ফুলে যাওয়া অথবা পায়ে অস্বস্তি বোধ হওয়া বেশ কমন সমস্যা তাই কোনটি সাধারণ পা ফোলা আর কোনটি ডিভিটি তা চিনতে পারা জরুরিডিভিটি এর লক্ষণসমূহ হচ্ছে—এক পায়ে বিশেষ করে গোড়ালি পায়ের নিচের অর্ধেকের পেছনের অংশ বা উরু হঠাৎ ফুলে যাওয়া এবং ব্যথা করা হাঁটলে কিংবা দাঁড়িয়ে থাকলে অনবরত ব্যথা করা আক্রান্ত স্থান গরম হয়ে থাকা চাপ দিলে ব্যথা পাওয়া আক্রান্ত স্থানের চামড়া লালচে হয়ে যাওয়াএই লক্ষণগুলো দেখা দিলে সাথে সাথে নিকটস্থ হাসপাতালে যেতে হবে সাধারণত পায়ের আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান পরীক্ষার মাধ্যমে ডিভিটি শনাক্ত করা হয়ে থাকে আপনার ডিভিটি হওয়ার ঝুঁকি তুলনামূলক বেশি কি না তা যেভাবে বুঝতে পারবেন—যদি আপনার অথবা আপনার পরিবারের কারো এর আগে রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা হয়ে থাকে গর্ভধারণকালে আপনার বয়স ৩৫ এর বেশি হয় আপনার ওজন অনেক বেশি হয় (বিএমআই ৩০ বা তার বেশি হয়) যদি কিছুদিন আগেই আপনার কোনো মারাত্মক ইনফেকশন অথবা গুরুতর ইনজুরি বা জখম হয়ে থাকে আপনার থ্রম্বোফিলিয়া রোগ থাকে কেননা এই রোগে সহজেই রক্ত জমাট বেঁধে যায় আপনার ডায়াবেটিস থাকে আপনার গর্ভে যমজ সন্তান থাকে অথবা গর্ভকালীন ও প্রসবজনিত কোনো জটিলতা থাকে গর্ভধারণ করার জন্য হরমোন জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করে ফার্টিলিটি চিকিৎসা নিয়ে থাকেন সিজারিয়ান অপারেশনের প্রয়োজন হয় আপনার ধূমপানের অভ্যাস থেকে থাকে আপনার পানিশূন্যতা থাকে পায়ের শিরাগুলো যদি লাল হয়ে ফুলে যায় এবং মারাত্মক ব্যথা করে এটিকে ভেরিকোজ ভেইন বলে লম্বা সময় ধরে জার্নি করলে ডিভিটি হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় জার্নিতে যে কাজগুলো করলে আপনার ডিভিটি এর ঝুঁকি কমতে পারে—প্রচুর পানি পান করা ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক পরা সম্ভব হলে মাঝে মাঝে একটু হাঁটাচলা করা বসা অবস্থায় সাধারণ কিছু পায়ের ব্যায়াম করা যেমন কিছুক্ষণ পর পর গোড়ালি নাড়ানো ডিভিটি থেকে হওয়া একটি প্রাণনাশক জটিলতা হচ্ছে পালমোনারি এম্বোলিজম এই রোগে জমাট বাঁধা রক্ত অথবা অন্য যেকোনো পদার্থ দ্বারা ফুসফুসের রক্তনালী বন্ধ হয়ে যায় ফলে ফুসফুসে রক্ত চলাচলে বাঁধা সৃষ্টি হয় যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এই রোগের চিকিৎসা করতে হয় তা না হলে রোগীর মৃত্যুও হতে পারে যে লক্ষণগুলোর মাধ্যমে পালমোনারি এম্বোলিজম সন্দেহ করা যায়—হঠাৎ শ্বাসকষ্ট শুরু হলে হঠাৎ অনেক বেশি কাশি হতে থাকলে এবং কাশির সাথে রক্ত গেলে শ্বাস নেওয়ার সময় বুকের পাঁজরে ব্যথা অনুভব করলে বুকের যেকোনো এক পাশে কিংবা স্তনের নিচে তীক্ষ্ণ বা সূচালো ব্যথা হতে থাকলে বুকে জ্বালাপোড়া কামড়ানো কিংবা বুক ভার হয়ে আসছে এমন মনে হলে শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত হয়ে গেলে পালস বা হার্টবিট বেড়ে গেলে গর্ভাবস্থায় ডিভিটি শনাক্ত হলে লোমলিক্যুলার ওয়েট হেপারিন ইনজেকশন দেওয়া হয়ে থাকে এটি আপনার জমাট বাঁধা রক্তপিণ্ডগুলোকে আর বড় হতে দেয় না ফলে শরীরের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ার মাধ্যমেই এটি রক্তে মিশে যায়প্লাসেন্টা বা অমরায় হেপারিন প্রবেশ করতে পারে না বিধায় মায়ের রক্তপ্রবাহ থেকে শিশুর শরীরে হেপারিন প্রবেশের কোনো সম্ভাবনা নেইতাই গর্ভাবস্থায় হেপারিন গর্ভের শিশুর কোনো ক্ষতি করে না] হেপারিন নেওয়া অবস্থায় শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোও নিরাপদএই ইনজেকশন আপনার ভবিষ্যতে আবারও ডিভিটি ও পালমোনারি এম্বোলিজম হওয়ার ঝুঁকি কমায় সাধারণত গর্ভাবস্থার বাকি সময়টুকু এবং প্রসবের পর ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত এই ইনজেকশন গ্রহণ করতে হয় প্রসব ব্যথা একবার শুরু হয়ে গেলে আর হেপারিন ইনজেকশন নেওয়া যাবে না যদি সিজারিয়ান সেকশনের পরিকল্পনা করা থাকে তাহলে অপারেশনের ২ ঘন্টা আগে থেকেই হেপারিন ইনজেকশন নেওয়া বন্ধ করে দিতে হবেডিভিটি এর জন্য অবশ্যই হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে তবে এর পাশাপাশি নিজেকেও কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে— যতটুকু সম্ভব শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকতে হবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে সুষম খাবার খেতে হবে গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে হওয়া সমস্যাগুলোর মধ্যে শ্বাসকষ্ট অন্যতম এসময় এমন শ্বাসকষ্ট হওয়া অস্বাভাবিক না তবে কখনো কখনো আপনার হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের রোগও এর পেছনে দায়ী হতে পারে সেক্ষেত্রে পরীক্ষার মাধ্যমে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবেগর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে হওয়া সমস্যাগুলোর মধ্যে শ্বাসকষ্ট অন্যতম এসময় এমন শ্বাসকষ্ট হওয়া অস্বাভাবিক না তবে কখনো কখনো আপনার হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের রোগও এর পেছনে দায়ী হতে পারে সেক্ষেত্রে পরীক্ষার মাধ্যমে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবেশ্বাসকষ্ট আপনার অস্বস্তির পাশাপাশি ঘুমেও বিঘ্ন ঘটাতে পারে গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কী এবং কখন জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে তা এই আর্টিকেলটিতে তুলে ধরা হয়েছে গর্ভবতী মায়েরা শ্বাসকষ্টকে এভাবে বর্ণনা করে থাকেন— স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছেন না শ্বাস নেওয়ার জন্য অধিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে গলা ও বুক চেপে আসছে মনে হচ্ছে পর্যাপ্ত বাতাস বা অক্সিজেন পাচ্ছে না মনে হচ্ছে অর্থাৎ বুক ভরে শ্বাস নিতে পারছেন না গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্ট অনেক কারণেই হতে পারে তাই কারণ ভেদে প্রায় সব ত্রৈমাসিকেই আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারেগর্ভাবস্থার শুরুর দিকে হরমোনের তারতম্য শ্বাসপ্রশ্বাসকে পরিবর্তন করে এসময় আপনার অতিরিক্ত ক্লান্তি থেকেও মনে হতে পারে আপনার অতিরিক্ত অক্সিজেন প্রয়োজন গর্ভাবস্থার মাঝের দিকে আপনার জরায়ুর বৃদ্ধিতে আপনার শ্বাসতন্ত্র ও রক্ত সংবহনতন্ত্রের বেশ কিছু পরিবর্তন হয় এতে করে আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারেআবার গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শ্বাসকষ্ট অনেকটা বেড়ে যেতে পারে কারণ ৩১ থেকে ৩৪ সপ্তাহের মধ্যে আপনার বাড়ন্ত শিশু অনেক বেশি জায়গা নিয়ে ফেলে এতে করে বুক ও পেটের মাঝামাঝি থাকা ডায়াফ্রাম নামের শ্বাসপ্রশ্বাসের সাহায্যকারী পেশিতে চাপ পড়ে এবং শ্বাসকষ্ট হয়তবে গর্ভাবস্থার শেষ সপ্তাহে আপনার শ্বাসকষ্ট কিছুটা কমতে পারে কারণ এসময় ডেলিভারির জন্য আপনার শিশু কিছুটা নিচে নামতে শুরু করে ফলে শ্বাস নেওয়ার জন্য কিছুটা বাড়তি জায়গা পাওয়া যায় নিচের কারণগুলোর ফলে গর্ভাবস্থায় আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারে— বাড়ন্ত জরায়ু গর্ভাবস্থায় জরায়ুর আকার বেড়ে যাওয়ার কারণে তা পেটের ওপর চাপ দেয় ফলে উপরের দিকে থাকা ফুসফুসের ওপরও কিছুটা চাপ পড়ে এতে করে ফুসফুসের অক্সিজেন বিনিময়ের স্থানটি সংকুচিত হয়ে আসে এ কারণে শ্বাস নিতে কিছুটা কষ্ট হয় হরমোনের পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায় এর মধ্যে প্রোজেস্টেরন হরমোন অন্যতম শরীরে প্রোজেস্টেরন এর মাত্রা বেড়ে গেলে তা শ্বাসপ্রশ্বাসের স্বাভাবিক গতিকে বাড়িয়ে দেয় ফলে অনেকে শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন সাধারণত গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়তে থাকে তাই এসময়ও অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারেযমজ শিশু বা একের অধিক সন্তান ধারণ করলে আপনার জরায়ু অধিক জায়গা দখল করবে সেক্ষেত্রে আপনার ফুসফুস প্রসারণের জন্য আরও কম জায়গা পাবে এবং এতে শ্বাসকষ্ট হতে পারে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি গর্ভাবস্থায় আপনার অতিরিক্ত ওজন বাড়লে সেটি থেকেও বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা হতে পারে এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট অন্যতমঅন্যান্য রোগ গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত কারণ ছাড়াও বিভিন্ন রোগের কারণেও আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারে যেমন রক্তশূন্যতা প্রিএক্লাম্পসিয়া পালমোনারি এমবোলিজম অ্যাজমা বা হাঁপানি নিউমোনিয়া কোভিড১৯এ ছাড়াও নিচের কারণগুলোও আপনার শ্বাসকষ্টের পেছনে দায়ী হতে পারে— এলার্জি দুশ্চিন্তা থাইরয়েডের সমস্যা কোনো কারণে শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলেগর্ভাবস্থায় যেকোনো কারণে আপনার শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অন্য যেকোনো রোগ বা সমস্যার কারণে যদি আপনার শ্বাসকষ্ট না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার বিশেষ কোনো চিকিৎসার তেমন প্রয়োজন হবে না তবে শ্বাসকষ্ট নিয়ে আপনার যেকোনো সমস্যা বা অস্বস্তির কথা গর্ভকালীন চেকআপের সময় আপনার চিকিৎসককে বলুনএসময় চিকিৎসক নিচের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করবেন— আপনার হার্টরেট এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের হার চেক করবেন আপনার কী রকম ব্যায়াম বা কাজকর্ম করা উচিত সে সম্পর্কে ধারণা দিবেন আপনার শ্বাসকষ্টের পেছনে অন্য কোনো রোগ থাকলে সেটি নির্ণয় করবেন এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিবেন শ্বাস কষ্ট নিয়ে আপনার কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে সেটির উত্তর দিবেন প্রয়োজনে আপনাকে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পাঠাবেন গর্ভাবস্থার কারণে শ্বাসকষ্ট হলে সেটি সাধারণত প্রতিরোধ করা যায় না তবে শ্বাসকষ্ট বোধ করলে নিচের ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে স্বস্তি পেতে পারেন— নিজেকে শান্ত করুন যেকোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে কাজেই শ্বাসকষ্ট হলে প্রথমেই নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করুন যেকোনো কাজ ধীরে সুস্থে করুন কোনো ভারী কাজ বা ব্যায়াম করার ফলে যদি আপনার শ্বাসকষ্ট হয় সবার আগে কাজটি থামান কাজের মাঝে বিরতি নিন অবস্থানের পরিবর্তন করুন সোজা হয়ে বসুন প্রয়োজনে কাঁধের সাহায্যে হেলান দিন বুকে চাপ অনুভব করলে এতে করে তা কিছুটা কমতে পারে দেহভঙ্গি খেয়াল করুন শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে আপনার দুই হাত কিছুক্ষণ মাথার উপরে তুলে ধরে রাখুন এতে করে আপনার পাঁজরের ওপর চাপ কমে আপনার শ্বাস নিতে সুবিধা হবে সঠিক পজিশনে ঘুমান রাতে ঘুমানোর সময় অতিরিক্ত বালিশ দিয়ে কোমর থেকে মাথা কিছুটা উঁচু করে ঘুমান এ ধরনের অবস্থাকে ডাক্তারি ভাষায় প্রপড আপ পজিশন বলে এতে করে ঘুমানোর সময় আপনার ফুসফুসের ওপর চাপ কম পড়ে শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম আপনাকে গভীরভাবে শ্বাস নিতে সাহায্য করে এর পাশাপাশি আপনি অনেকটা রিল্যাক্স হবেন ওজনের দিকে লক্ষ্য রাখুন গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন কমাতে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন আপনার গর্ভকালীন চেকআপের সময় চিকিৎসক বলে দিবেন কতটুকু ওজন বাড়া আপনার জন্য স্বাভাবিক সে অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুনজরুরি অবস্থা কোনো কাজ (যেমন সিঁড়ি দিয়ে উঠা ভারী কিছু আলগানো) এসব করার সময়ে হালকা শ্বাসকষ্ট হলে খেয়াল করুন বিশ্রাম নিলে তা প্রশমিত হয়ে যায় কি না যদি বিশ্রামের পরও ঠিক না হয় অথবা আপনার নিচের এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যায় সেটিকে জরুরি অবস্থা মনে করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন তীব্র শ্বাসকষ্ট হলে শ্বাসকষ্টের সাথে কাশি হলে কথা বলার সময় একটা পূর্ণ বাক্য শেষ করতে না পারলে বুক ব্যথার সাথে শ্বাসকষ্ট হলে জ্বরের সাথে শ্বাসকষ্ট হলে আপনার হাত পায়ের আঙুল ঠোঁট নীল বর্ণ ধারণ করা শুরু করলে শ্বাসকষ্টের সাথে মুখ পেট ফুলে গেলে (অ্যালার্জির কারণে এমনটা হতে পারে) হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট শুরু হলে গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে যেসকল পরিবর্তন আসে তার একটি হচ্ছে শরীরের ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না হলেও স্ট্রেচ মার্ক থেকে চুলকানি হতে পারে—যা বেশ অস্বস্তিকর এ ছাড়া অনেকেই মনে করেন স্ট্রেচ মার্ক সৌন্দর্যহানির কারণ এবং এগুলো নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেনগর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে যেসকল পরিবর্তন আসে তার একটি হচ্ছে শরীরের ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না হলেও স্ট্রেচ মার্ক থেকে চুলকানি হতে পারে—যা বেশ অস্বস্তিকর এ ছাড়া অনেকেই মনে করেন স্ট্রেচ মার্ক সৌন্দর্যহানির কারণ এবং এগুলো নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন গর্ভকালীন সময়ে একজন মায়ের ওজন বৃদ্ধি পায় একেকজন নারীর ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির পরিমাণ একেক রকম হতে পারে স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন বেশি বেড়ে গেলে আপনার শরীর তাড়াতাড়ি প্রসারিত হয় তবে এই প্রসারণের সাথে তাল মিলিয়ে আপনার চামড়া বা ত্বক প্রসারিত হতে পারে না ফলে ত্বকের মাঝের স্তরটিতে অতিরিক্ত টান পড়ে এবং এটি ফেটে যায়গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন স্ট্রেচ মার্ক হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে এই পরিবর্তনের ফলে অনেকসময় আপনার ত্বকের কোলাজেন তন্তু দুর্বল হয়ে যায়কোলাজেন তন্তু হলো ত্বকের একটি উপাদান যা চামড়া বা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা করে অর্থাৎ একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত চামড়া প্রসারিত হওয়ার পর পুনরায় তাকে পূর্বের অবস্থায় ফেরত আসতে সহায়তা করেকিন্তু কোলাজেন তন্তু দুর্বল হয়ে গেলে তার এই ক্ষমতা কমে আসে ফলে গর্ভাবস্থায় শরীর যখন প্রসারিত হতে শুরু করে এই তন্তু সহজেই ভেঙে যায় এবং স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ তৈরি হয় তবে এই কারণটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এখনো মতানৈক্য আছেএ ছাড়া যাদের পরিবারে গর্ভবতী নারীদের মধ্যে স্ট্রেচ মার্ক কমন অথবা যাদের গর্ভে যমজ বাচ্চা আছে কিংবা যাদের গর্ভকালে পলিহাইড্রামনিওস এর সমস্যা দেখা দেয় তাদের গায়ে স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি পলিহাইড্রামনিওস হলে গর্ভের শিশুর চারদিকে অতিরিক্ত তরল বা অ্যামনিওটিক ফ্লুইড জমে যায় স্ট্রেচ মার্ক পুরোপুরি প্রতিরোধযোগ্য নয় তবে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলে গর্ভাবস্থায় চামড়ায় অতিরিক্ত স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ পড়ার সম্ভাবনা কমানো যেতে পারে যেমন—এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ত্বকের নমনীয়তা বজায় রাখা নমনীয়তা বজায় রাখতে ও ত্বককে মজবুত করতে কোলাজেন তন্তুর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে এর জন্য কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে যেমন মাংস মাছ সবুজ শাকসবজি আমড়া পেয়ারা কমলা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল আমাদের শরীরে কোলাজেন তৈরিতে ভূমিকা রাখেত্বক শুষ্ক থাকলে ফাটার প্রবণতা বেশি থাকে তাই ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহারের বিকল্প নেই ক্রিমের পরিবর্তে অলিভ ওয়েলও ব্যবহার করা যাবে সাধারণত শরীরের যেসকল অংশে চামড়া প্রসারিত হওয়ার কারণে ফাটা দাগ দেখা দেয় সেসব জায়গায় নিয়মিত লোশন বা তেল মালিশ করতে পারেনপর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার অভ্যাস করতে হবে পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বক সতেজ থাকে একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেননিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো হয় যা ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করে তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুনস্ট্রেচ মার্ক প্রতিরোধের আরেকটি উপায় হচ্ছে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা তবে এক্ষেত্রে কোনোভাবেই কম খেয়ে ওজন কম রাখার চেষ্টা করা যাবে না বরং স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করতে হবে প্রয়োজনে একজন চিকিৎসক অথবা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন এই সমস্যার নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই চুলকানি ও অস্বস্তি দূর করার জন্য ত্বকে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে ত্বক আর্দ্র রাখতে পারেন বাজারে অনেক ক্রিম ও লোশন পাওয়া যায় যেগুলো স্ট্রেচ মার্ক ভালো করার দাবি করে থাকে তবে ক্লিনিক্যালি এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নিলেজার থেরাপির মাধ্যমে দাগ হালকা করা গেলেও সাধারণত পুরোপুরি স্বাভাবিক হয় নাসাধারণত বাচ্চা হওয়ার পর নিজে থেকেই দাগ গুলো অনেকটা হালকা হয়ে আসে তবে হয়তো কখনোই পুরোপুরি চলে যায় না[৩]যদি বাচ্চা হয়ে যাওয়ার পরেও স্ট্রেচ মার্ক হালকা না হয় তাহলে একজন চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন হঠাৎ হাত থেকে কিছু ফসকে যাওয়া অথবা অসচেতনভাবে হোচট খাওয়া—এ ধরনের বেখেয়ালি ঘটনাগুলো অনেক গর্ভবতী নারীরই হয়ে থাকে প্রথম দিকে অল্প থাকলেও গর্ভাবস্থার শেষ দিকে বিশেষ করে শেষ তিন মাসে এ ধরনের সমস্যাগুলো অনেকের জন্যই ভোগান্তি তৈরি করতে পারে কিছু সহজ উপায় মেনে চললে এ সমস্যাগুলো অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়হঠাৎ হাত থেকে কিছু ফসকে যাওয়া অথবা অসচেতনভাবে হোচট খাওয়া—এ ধরনের বেখেয়ালি ঘটনাগুলো অনেক গর্ভবতী নারীরই হয়ে থাকে প্রথম দিকে অল্প থাকলেও গর্ভাবস্থার শেষ দিকে বিশেষ করে শেষ তিন মাসে এ ধরনের সমস্যাগুলো অনেকের জন্যই ভোগান্তি তৈরি করতে পারে কিছু সহজ উপায় মেনে চললে এ সমস্যাগুলো অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায় গর্ভকালীন সময়ে আপনার মধ্যে শারীরিক ও মানসিক কারণে নানান রকম পরিবর্তন হয় অনেকসময় এসব পরিবর্তন বেখেয়ালি বা ক্লামজি বোধের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এরকম কিছু পরিবর্তন হচ্ছে— অতিরিক্ত ওজন গর্ভাবস্থার অতিরিক্ত ওজন আপনার জন্য ক্লান্তিদায়ক হতে পারে এসময়ে আপনার স্তন ও পেটের আকার বড় হতে থাকার কারণে আপনার শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে কষ্ট হতে পারে পেটের আকার বড় হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকক্ষেত্রে হাঁটার সময় পা নাও দেখা যেতে পারে ফলে অসাবধানতাবশত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়তে পারে শারীরিক পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে একটি হাড়ের সাথে আরেকটি হাড় সংযোগকারী লিগামেন্ট ঢিলা হয়ে হাড়গুলোর সন্ধি বা জয়েন্টে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে এ ছাড়া এসময়ে শরীরে পানি জমে হাতপা ফুলে যেতে পারে এসব কারণেও এসময় শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে কষ্ট হতে পারে ভুলোমনা হয়ে যাওয়া গর্ভাবস্থায় ভুলে যাওয়া একটি কমন উপসর্গ কোথায় কোন জিনিস আছে তা মনে করতে না পারার কারণেও হবু মায়েরা অনেকসময় বেখেয়ালি হয়ে যান দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন গর্ভকালীন সময়ে কখনো কখনো চোখের দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন আসার কারণেও আপনি অসাবধানতাবশত পড়ে যেতে পারেন মাথা ঘুরানো গর্ভাবস্থায় মাথা ঘুরানো কমন একটি উপসর্গ কখনো কখনো গর্ভাবস্থায় মাথা ঘুরানোর কারণে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকেএগুলো ছাড়াও জীবনযাত্রার মান ও অন্যান্য রোগের ওপরেও গর্ভাবস্থার এই বেখেয়ালি বোধ নির্ভর করে অলস জীবনযাত্রা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস অতিরিক্ত বমিভাব—এগুলোর কারণেও বেখেয়ালি বোধ এবং হোচট খাওয়ার হার বেড়ে যায় গর্ভাবস্থায় হঠাৎ ভারসাম্য হারানোর এত কারণ দেখে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই কিছু ঘরোয়া সমাধান মেনে সাবধান থাকলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব দৈনন্দিন কাজ ধীরেসুস্থে করুনগর্ভাবস্থায় যে আপনার মধ্যে পরিবর্তন এসেছে এটা বুঝেই দৈনন্দিন কাজ করার চেষ্টা করুন হাঁটার সময় খেয়াল করুন পথে কোথাও ভেজা পিছলে অথবা উঁচুনিচু স্থান আছে কি না হাতে কোনো জিনিস থাকলে সেটি খেয়াল করে চলুন তাড়াহুড়া করে চলাফেরা করলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এজন্য দেখে ও বুঝে ধীরেসুস্থে চলাচল করার চেষ্টা করুন গর্ভাবস্থার উপযোগী হালকা ব্যায়াম বেছে নিনশারীরিক ব্যায়াম গর্ভাবস্থায় পড়ে যাওয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে গর্ভাবস্থার উপযোগী হালকা ব্যায়াম মাংসপেশি শক্ত করে এবং ভারসাম্য রক্ষাতেও সাহায্য করে হাঁটাহাঁটি দৌড়ানো জগিং অথবা সাঁতার কাটা—এ ধরনের ব্যায়াম এসময়ে করতে পারেন গর্ভাবস্থার জন্য উপযোগী কোমরের বেল্ট ব্যবহার করুনভারসাম্য রক্ষার জন্য ম্যাটারনিটি সাপোর্ট বেল্ট ব্যবহার করা একটি কার্যকরী উপায় এটি গর্ভাবস্থায় পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করেএটি যেকোনো ফার্মেসি অথবা বড় সুপার মার্কেটে পেতে পারেন ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এড়িয়ে চলুনঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজ দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় এজন্য গর্ভকালীন সময়ে এ ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকুন যেমন মই বেয়ে ওঠা চেয়ারের ওপর উঠে কোনো কাজ করা এ ধরনের কোনো কাজ করার সময়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এজন্য এ ধরনের কাজের প্রয়োজন হলে পরিবার অথবা কাছের কোনো মানুষকে করে দিতে বলুন ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত সাবধান থাকুনযেসব পরিস্থিতিতে ঝুঁকি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে সেখানে অতিরিক্ত সাবধানতা মেনে চলাচল করুন যেমন সিঁড়ি দিয়ে ওঠা অথবা নামার সময় সবসময় রেলিং ধরে ওঠানামা করুন অন্ধকার অথবা কম আলোর রাস্তায় চলাচল করবেন নাআপনি আগে অতিরিক্ত ব্যায়াম ও খেলাধুলায় অভ্যস্ত থাকলেও গর্ভাবস্থার সময়টাতে ঝুঁকিপূর্ন খেলা কমিয়ে দিন যেমন ব্যাডমিন্টন উঁচুনিচু স্থানে জগিং ঘোড়ায় ওঠা জিমন্যাস্টিকস—এ ধরনের খেলায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে আরামদায়ক জুতা বেছে নিনঅনেক নারীরই হিল জুতা পরতে ভালো লাগতে পারে কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে হিলজুতা অথবা পিছলে যেতে পারে এমন ধরনের জুতা পরা থেকে বিরত থাকুন এগুলো চলাফেরার অসুবিধা করার সাথে সাথে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ায় বরং এমন ধরনের জুতা বেছে নিন যাতে চলাফেরা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিনগর্ভাবস্থায় ক্লান্তি কমাতে রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন এবং দিনেও প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্রাম নিন এটি ক্লান্তির কারণে তৈরি হওয়া বেখেয়ালি বোধ কমাতে সাহায্য করবে পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম করুনপায়ের গোড়ালির ফুলে যাওয়ার কারণে সমস্যা তৈরি হলে একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন এটি গোড়ালি ফুলে যাওয়া কমাতে সাহায্য করে ব্যায়ামের নিয়ম জানতে আমাদের পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম লেখাটি পড়ুন সম্ভাব্য রোগের চিকিৎসায় ডাক্তারের পরামর্শ নিনকার্পাল টানেল সিনড্রোম অথবা অন্য কোনো রোগের কারণে আপনি বেখেয়ালি হয়ে যাচ্ছেন বলে মনে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ডাক্তার রোগ অনুযায়ী উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারবেনকখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত গর্ভাবস্থায় বেখেয়ালি হয়ে যাওয়া একটি কমন উপসর্গ শুধুমাত্র এই উপসর্গ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার তেমন কারণ নেই সাধারণত তবে যদি বেখেয়ালি হওয়ার সাথে সাথে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা যায় সেটি অন্য কোনো রোগের কারণবশত হতে পারে এমন কিছু লক্ষণ হচ্ছে— প্রচন্ড মাথাব্যথা চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টি ঘোলা হয়ে যাওয়া বা চোখের সামনে আলোর ঝলকের মত দেখতে পাওয়া বমি হওয়া পাঁজরের হাড়ের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথা শরীরের বিভিন্ন জায়গা (যেমন পায়ের পাতা গোড়ালি মুখ ও হাত) হঠাৎ ফুলে যাওয়া এগুলো প্রিএক্লাম্পসিয়ার লক্ষণ হতে পারে প্রিএক্লাম্পসিয়া গর্ভাবস্থার জরুরি একটি অবস্থা এজন্য এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন যখন পাকস্থলীর আস্তরণ কোন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তাতে প্রদাহের (inflammation) সৃষ্টি হয় সেই রোগকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় গ্যাস্ট্রাইটিস (gastritis) আমরা অনেকেই এই রোগকে গ্যাস্ট্রিক বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বলে থাকি এই রোগটি অনেকগুলো কারণেই হতে পারেযখন পাকস্থলীর আস্তরণ কোন কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে তাতে প্রদাহের (inflammation) সৃষ্টি হয় সেই রোগকে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় গ্যাস্ট্রাইটিস (gastritis) আমরা অনেকেই এই রোগকে গ্যাস্ট্রিক বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বলে থাকি এই রোগটি অনেকগুলো কারণেই হতে পারেবেশিরভাগ মানুষের ক্ষেত্রে এই সমস্যা মারাত্মক হয় না চিকিৎসা নিলে দ্রুত সেরে ওঠে কিন্তু চিকিৎসা না করালে এটি বছরের পর বছর ভোগাতে পারে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণের কারণে এই রোগ হলে অনেকেরই কোন লক্ষণ দেখা যায় না আবার কারো কারো নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে বদহজম পেট কামড়ানো বা পেটে জ্বালাপোড়া করা বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া খাওয়ার পর পেট ভরা ভরা মনে হওয়াপাকস্থলীর আস্তরণ ক্ষয় হয়ে (erosive gastritis) যদি তা পাকস্থলীতে থাকা অ্যাসিডের সংস্পর্শে চলে আসে তখন উপরের লক্ষণগুলোর সাথে ব্যথা রক্তপাত বা পাকস্থলীর আলসারের মত লক্ষণ দেখা দিতে পারেএই লক্ষণগুলো হঠাৎ করেই তীব্রভাবে শুরু হতে পারে (acute gastritis) বা অনেকদিন ধরে ধীরে ধীরে হতে পারে (chronic gastritis) আপনার যদি বদহজম থাকে তাহলে আপনি নিজে নিজেই খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রার পরিবর্তন করে অথবা অ্যান্টাসিড (antacid) এর মত ওষুধ সেবন করে এর সমাধানের করার চেষ্টা করতে পারেন তবে নিজে নিজে অ্যান্টাসিড খাওয়ার আগে এই ওষুধ আপনার জন্য নিরাপদ কি না কিভাবে সেবন করবেন আর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া গুলো অবশ্যই জেনে নিবেন বদহজমের কারণ ও ঘরোয়া সামাধান একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন যদি আপনার বদহজমের লক্ষণগুলো এক সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে থাকে অথবা বহজমের কারণে পেটে তীব্র ব্যথা বা অস্বস্তি বোধ হয় বা কোন ওষুধের কারণে সমস্যাগুলো হচ্ছে বলে মনে হয় বা বমি বা পায়খানার সাথে রক্ত যায় পায়খানা কালচে হয় বা বমির সাথে কফি দানার মত কিছু আসে পেটে ব্যথা হওয়া মানেই যে সেটা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার লক্ষণ তা নয় অনেক কারণেই পেট ব্যথা হতে পারে যেমন আটকে থাকা বায়ু ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (Irritable Bowel Syndrome) ইত্যাদিকী কী পরীক্ষা করা হয় ডাক্তার আপনাকে নিচের পরীক্ষাগুলো থেকে এক বা একাধিক পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন পায়খানা পরীক্ষা (stool test) – এই পরীক্ষার মাধ্যমে পাকস্থলীতে কোন জীবাণুর সংক্রমণ (infection) আছে কি না বা পাকস্থলী থেকে রক্ত যাচ্ছে কি না তা দেখা হয় নিঃশ্বাস পরীক্ষা (breath test) – Helicobacter pylori নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ আছে কি না দেখার জন্য এই পরীক্ষাটি করা হয় স্বচ্ছ স্বাদহীন তেজস্ক্রিয় কার্বনযুক্ত এক গ্লাস তরল পদার্থ পান করে একটি ব্যাগে ফুঁ দিতে বলা হয় এন্ডোস্কোপি (endoscopy) – একটি নমনীয় নল গলার ভেতর দিয়ে প্রবেশ করিয়ে খাদ্যনালীর মধ্য দিয়ে পাকস্থলীতে নিয়ে গিয়ে প্রদাহের কোন চিহ্ন আছে কি না তা দেখা হয় বেরিয়াম সোয়ালো (Barium swallow)– বেরিয়াম নামক একটা রাসায়নিক পদার্থের দ্রবণ খেতে দেওয়া হবে সেই দ্রবণ পরিপাকতন্ত্রের ভেতর দিয়ে যাওয়ার সময় এক্সরে তে পরিষ্কারভাবে দেখা যায় এবং তা রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে সাধারণত যেসব কারণে এই রোগ দেখা দেয় সেগুলো হল Helicobacter pylori নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ধূমপান নিয়মিত অ্যাসপিরিন (aspirin) আইবুপ্রোফেন (ibuprofen) বা নন–স্টেরয়েডাল অ্যান্টি–ইনফ্লামেটরি (nonsteroidal antiinflammatory) জাতীয় কোন ব্যথার ওষুধ সেবন শরীরের ওপর চাপ সৃষ্টিকারী ঘটনা যেমন বড় অপারেশন গুরুতর আঘাত বা কোন জটিল রোগ অতিরিক্ত কোকেইন বা অ্যালকোহল সেবন কিছু ক্ষেত্রে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা ভুলবশত নিজের শরীরকেই আক্রমণ করে পাকস্থলীর আস্তরণকে আক্রমণ করলে এই রোগ দেখা দেয় চিকিৎসার মূল ৩টি লক্ষ্য হল পাকস্থলীতে থাকা এসিডের পরিমাণ কমিয়ে লক্ষণগুলো নিরসন করা পাকস্থলীর আস্তরণ সেরে তোলা রোগের অন্তর্নিহিত কারণ আছে কি না তা খুঁজে বের করে চিকিৎসা করাযেসব ওষুধ ব্যবহার করা হয়অ্যান্টাসিড (antacids) – এই সহজলভ্য ওষুধ পাকস্থলীর এসিড প্রশমিত করে দ্রুত ব্যথা কমায় হিস্টামিন ২ ব্লকার (Histamine 2 blockers) – এই ওষুধগুলো পাকস্থলীতে অ্যাসিড তৈরির পরিমাণ কমায় প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (proton pump inhibitors) – এই ওষুধগুলিও পাকস্থলীর অ্যাসিড তৈরি কমায় তবে এরা হিস্টামিন ২ ব্লকারদের থেকেও বেশি কার্যকর উদাহরণ ওমেপ্রাজলHelicobacter pylori নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হওয়া গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা (H pylori gastritis)অনেকেই এই ব্যাকটেরিয়া দিয়ে সংক্রমিত হলেও বুঝতে পারেন না বহু মানুষের পাকস্থলীতে এই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ থাকে কিন্তু সাধারণত কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না তবে এই ব্যাকটেরিয়ার কারণে পাকস্থলীর আবরণীতে প্রদাহ হয়ে বারবার বদহজম সৃষ্টি করতে পারেএই সমস্যা বয়স্কদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং সাধারণত পাকস্থলীর আবরণী ক্ষয় করে না এমন দীর্ঘমেয়াদী রোগের (chronic (persistent) nonerosive cases) পেছনে দায়ী ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করার চিকিৎসা না পেলে এই সংক্রমণ সাধারণত সারাজীবন থেকে যায়ব্যাকটেরিয়া নির্মূল করতে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর এর সাথে কিছু এন্টিবায়োটিক একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সেবন করতে হবেলক্ষণ উপশমের জন্য আপনি কী করতে পারেনআপনার যদি মনে হয় বারবার ব্যথার ওষুধ (NSAIDs) সেবন করার কারণে আপনার গ্যাস্ট্রিকের সমস্যার হচ্ছে তাহলে NSAIDsদলভুক্ত নয় এমন কোন ব্যথার ওষুধ সেবন করা যেতে পারে যেমন প্যারাসিটামল এ বিষয়ে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিনএছাড়াও নিচের এই ৫টি কাজ করতে পারেন বারবার অল্প অল্প করে খাবার খাওয়া মশলাদার ও ভাজাপোড়ার মত যেসব খাবার পাকস্থলীর ক্ষতি করে সেগুলো পারতপক্ষে এড়িয়ে চলা মদ পান থেকে বিরত থাকা বা তা যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা ধূমপানের অভ্যাস থাকলে তা ছেড়ে দেওয়া মানসিক চাপ মোকাবেলা করা দীর্ঘদিন ধরে এই রোগে ভুগতে থাকলে নিচে উল্লেখিত রোগলোর ঝুঁকি বাড়তে পারে পাকস্থলীর আলসার বা ক্ষত পাকস্থলীর পলিপ (পাকস্থলীর আস্তরণ থেকে সৃষ্ট ছোটছোট পিণ্ড) পাকস্থলীর টিউমার যা ক্যান্সারও হতে পারে খুব বিরক্তিকর হলেও ঘন ঘন প্রস্রাব করা গর্ভাবস্থার কমন একটি লক্ষণ গর্ভাবস্থায় সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রস্রাবের হারও কমবেশি হতে দেখা যায় গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা শুরু হতে পারে পরবর্তীতে গর্ভাবস্থার মাঝের তিন মাসে প্রস্রাব হওয়ার মাত্রা অন্যান্য মাসগুলোর তুলনায় কিছুটা কমেও যেতে পারে তবে গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসের দিকে আবারও ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার হার আগের থেকে প্রায় অনেকটাই বেড়ে যেতে পারেমাঝেমধ্যে প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কম হলেও বারবার বেগ আসার কারণে বাথরুমে যাওয়া লাগে কখনো কখনো হাঁচিকাশি দিলে অথবা জোরে হাসলে প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে সামান্য প্রস্রাব বেরিয়ে আসতে পারে আবার ব্যায়ামের কিংবা ভারী কিছু তোলার সময়েও এমন হতে পারে তবে সাধারণত সন্তান প্রসবের পরে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা ধীরে ধীরে ভালো হয়ে যায় গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে— গর্ভাবস্থার প্রথম কিছু সপ্তাহে শরীরে বিভিন্ন ধরনের হরমোনের মাত্রার পরিবর্তনের কারণে কিডনির প্রস্রাব তৈরি করার ক্ষমতা অনেকখানি বেড়ে যায় ফলে কিডনি আরও বেশি করে প্রস্রাব তৈরির কাজ করে গর্ভে শিশুর অবস্থানের কারণেও প্রস্রাবের বেগ আগের থেকে বেড়ে যেতে পারে সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শিশু আগের চেয়ে অনেকটা বড় হয়ে যায় সেসময়ে তার মাথা মূত্রথলিতে চাপ দেওয়া শুরু করে ফলে গর্ভধারণের শেষ তিন মাসেও ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা থাকতে পারে এ ছাড়াও গর্ভাবস্থার প্রথম কিছু সপ্তাহে শিশু তলপেটের নিচের দিকে মূত্রথলির পেছনে থাকে একারণে মূত্রথলীতে চাপ লেগে প্রস্রাবের বেগ বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হয় আবার গর্ভাবস্থার মাঝের তিন মাসে শিশু তলপেটের ওপরের দিকে চলে আসে এজন্য তখন প্রস্রাবের বেগ কিছুটা কমে যেতে পারে বলে মনে করা হয় তবে এসবের পক্ষে এখনো তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এ ছাড়াও এসময়ে গর্ভবতী নারীদের পা ও গোড়ালিতে পানি জমে যায় রাতের বেলা কাত হয়ে শুলে শরীর সেখান থেকে পানি শুষে নিতে থাকে এটিও রাতে বার বার প্রস্রাব হওয়ার একটি কারণ হতে পারে প্রস্রাবের বেগ আসলে তা চেপে রাখার চেষ্টা করবেন না এতে ইউরিন ইনফেকশন হওয়া সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক গর্ভকালীন সময়ে এই সমস্যা সম্পূর্ণভাবে দূর করা সম্ভব নাই হতে পারে তবে সন্তান জন্মের পর ধীরে ধীরে এই সমস্যা আপনাআপনি ভালো হয়ে যায় তাই এটি নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবেন নাকিছু সহজ নিয়মকানুন মেনে চললে আপনি এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন যেমন— প্রস্রাবের সময়ে দেহভঙ্গিপ্রস্রাব করার সময়ে কোমর একটু পেছনের দিকে বাঁকিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে বসুন এভাবে ঝুঁকে বসে থাকা অবস্থাতেই সামনেপেছনে দুলুনির মতো করে নড়াচড়ার চেষ্টা করুন তারপর প্রস্রাব করুন গর্ভাবস্থার শেষের দিকের সময়টায় এই পদ্ধতি মূত্রথলি ভালোভাবে খালি হতে সাহায্য করে এতে একবার প্রস্রাব করার কিছুক্ষণ পরেই আবার প্রস্রাবের বেগ আসে না পর্যাপ্ত পানি পান করারাতে বারবার প্রস্রাব করার জন্য বাথরুমে যাওয়া বিরক্তিকর হতে পারে তবে এজন্য দৈনিক পানি পান করার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া যাবে না সমাধান হিসেবে রাতে ঘুমানোর কয়েক ঘন্টা আগে পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে পারেন সেই সাথে সারাদিন নিয়মিত বিরতিতে পর্যাপ্ত পানি পান করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে তাহলে হয়তো ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে পানি পান করার প্রয়োজন হবে নাউল্লেখ্য প্রস্রাব করার জন্য রাতে বারবার বাথরুমে যেতে হলে ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে সেখান থেকে ক্লান্ত লাগতে পারে মনমেজাজের ওপরেও প্রভাব পড়তে পারে এজন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করার চেষ্টা করুনগুরুত্বপূর্ণ তথ্য খেয়াল রাখুন রাতে ঘুমানোর আগে পানি না পান করলেও দৈনন্দিন পানির পরিমাণ যেন ঠিক থাকে গর্ভাবস্থায় শিশুর চাহিদা পূরণের জন্য অধিক পানির প্রয়োজন হয় এজন্য গর্ভাবস্থায় অন্তত ২–৩ লিটার অথবা ৮–১২ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করতে হবে ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলাক্যাফেইনযুক্ত পানীয় প্রস্রাবের হার বাড়াতে পারে এজন্য কফি চা ও কোমল পানীয়ের (যেমন কোক ফান্টা সেভেনআপ ও পেপসি) মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুনজেনে রাখা ভালো গর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পান করা অথবা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেনএর চেয়ে বেশি পরিমাণে ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খেলে গর্ভপাত হওয়ার বা গর্ভের শিশু মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাগর্ভাবস্থায় একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত ওজন বাড়া স্বাভাবিক এই বাড়তি ওজন শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ তবে বাড়তি ওজন স্বাভাবিক সীমার ছাড়িয়ে গেলে সেটি মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ানোর পাশাপাশি প্রস্রাবের বেগ বাড়িয়ে দিতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় যেন আপনার ওজন স্বাভাবিকের অতিরিক্ত বেড়ে না যায় সেদিকে লক্ষ রাখুন আপনার জন্য কতটুকু ওজন বাড়া স্বাভাবিক সেটি গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে জিজ্ঞেস করে নিন সেই অনুযায়ী সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খান এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করাকোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব ও মূথনালীর ইনফেকশনসহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হতে পারেএজন্য সুস্থ জীবনধারণের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন যেমন পর্যাপ্ত পানি পান করা আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া এবং ব্যায়াম করার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণে ব্যায়ামপ্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনি একটি বিশেষ ব্যায়াম করতে পারেন এই বিশেষ ধরনের ব্যায়ামটি পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ বা কেগেল ব্যায়াম নামে পরিচিতপ্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করার সাথে সাথে প্রসব ও প্রসব পরবর্তী সময়েও এই ব্যায়ামটি সুবিধাজনক ফল দেয় এই ব্যায়ামের মাধ্যমে যোনিপথ ও প্রস্রাবের রাস্তার পেশিগুলো মজবুত হয় এর ফলে পরবর্তীতে প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়চেষ্টা করুন দিনে এভাবে তিন সেট ব্যায়াম করতে মনে রাখার সুবিধার জন্য প্রতিবেলা খাওয়ার আগে এক সেট ব্যায়াম করতে পারেনকেগেল ব্যায়াম করার জন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন— পায়খানার রাস্তা চাপ দিয়ে এমনভাবে বন্ধ করে রাখুন যেন পায়খানা আটকানোর চেষ্টা করছেন একই সাথে যোনিপথকে চাপ দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন প্রস্রাবের রাস্তাতেও এমনভাবে চাপ দিন যেন প্রস্রাব আটকানোর চেষ্টা করছেন প্রথম কয়েকবার করার সময়ে ব্যায়ামটি দ্রুত করুন ওপরের পদ্ধতিতে দ্রুত চাপ প্রয়োগ করুন এবং ছেড়ে দিন এবার ব্যায়ামটা ধীরে ধীরে করার চেষ্টা করুন যতক্ষণ সম্ভব হয় চাপ দিয়ে ধরে রাখুন এভাবে চাপ ধরে রেখে ১০ পর্যন্ত গুনুন তারপর চাপ ছেড়ে দিন এরকম ভাবে আট বার চাপ দেওয়া এবং ছেড়ে দেওয়াকে এক সেট ব্যায়াম ধরা হয় এই ব্যায়ামটি প্রস্রাব করার সময়ে করা উচিত নয় ব্যায়াম করতে কোনো অসুবিধা হলে অথবা নির্দেশনা ঠিকমতো বুঝতে না পারলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন মাঝেমধ্যে ইউরিন ইনফেকশন বা ইউটিআই এর কারণেও ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে গর্ভাবস্থায় নারীদের প্রস্রাবের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এজন্য ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার সাথে কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত লক্ষণগুলো হচ্ছে—প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা অথবা জ্বালাপোড়া হওয়া স্বাভাবিকের চেয়ে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া রাতে বারবার প্রস্রাবের বেগ আসা অস্বাভাবিক গন্ধযুক্ত অথবা ঘোলাটে প্রস্রাব হওয়া হঠাৎ প্রস্রাবের বেগ আসা অথবা বেগ ধরে রাখতে সমস্যা হওয়া তলপেটে ব্যথা হওয়া প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া কোমরের পেছনে পাঁজরের ঠিক নিচের অংশে ব্যথা হওয়া জ্বর আসা কিংবা গা গরম লাগা এবং শরীরে কাঁপুনি হওয়া শরীরের তাপমাত্রা ৩৬° সেলসিয়াস বা ৯৬৮° ফারেনহাইট এর চেয়ে কমে যাওয়া ক্লান্তি ও বমি বমি লাগা এসব লক্ষণ প্রস্রাবের ইনফেকশন থেকে শুরু করে কিডনির ইনফেকশনসহ বিভিন্ন গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে হতে পারে এগুলো দেখা দিলে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন এবং দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ইনফেকশন নিশ্চিত হলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনপড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথাগর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক অথবা অন্য কোনো ধরনের ঔষধ সেবন করা বিপদজনক হতে পারে এজন্য এ অবস্থায় যেকোনো ঔষধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিনকিডনির ইনফেকশন প্রসব সংক্রান্ত জটিলতা বাড়িয়ে তুলতে পারে এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা জরুরিগুরুত্বপূর্ণ তথ্য কখনো কখনো গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে এর পাশাপাশি ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া ক্লান্ত লাগা এবং মুখ শুকিয়ে যাওয়া—এ ধরনের অনুভূতিও হতে পারে এগুলো গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এর লক্ষণ৷ তাই আপনি আগে থেকেই ডায়াবেটিসে ভুগলে অথবা গর্ভকালীন সময়ে তীব্র ঘন ঘন প্রস্রাবের সাথে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের লক্ষণ থাকলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন চোখ ওঠা খুব পরিচিত একটি সমস্যা একে ডাক্তারি ভাষায় কনজাঙ্কটিভাইটিস বলা হয় চোখ ওঠার সমস্যা সাধারণত বিশেষ কোনো চিকিৎসা ছাড়াই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায় চোখ ওঠার সমস্যা একজন থেকে আরেকজনে দ্রুত ছড়িয়ে যেতে পারে তাই চোখ ওঠা প্রতিরোধের সহজ ও কার্যকর উপায়গুলো জেনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ চোখ ওঠার কারণের ওপর নির্ভর করে ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারেচোখ উঠলে সাধারণত দুই চোখই আক্রান্ত হয় চোখ ওঠার প্রধান লক্ষণ হলো চোখের সাদা অংশ লাল অথবা গোলাপি রঙের হয়ে যাওয়া অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে— চোখের পাতা ফুলে যাওয়া চোখের সাদা অংশের ওপরের পাতলা স্বচ্ছ পর্দা ফুলে যাওয়া চোখ চুলকানো খচখচ করা কিংবা জ্বালাপোড়া করা চোখ ওঠার কারণে চোখ লাল হয়ে খচখচ করলে সেটা সাধারণত ছোঁয়াচে হয় চোখের মধ্যে কিছু ঢুকেছে এমন মনে হওয়া অথবা চোখ চুলকানোর তাড়না হওয়া চোখ দিয়ে পানি পড়া চোখে মিউকাস জাতীয় তরল অথবা পুঁজ জমা পুঁজ শুকিয়ে চটচটে হয়ে চোখের পাতা অথবা পাপড়ি সাময়িকভাবে জোড়া লেগে যেতে পারে বিশেষ করে সকালে ঘুম থেকে ওঠার পরে এমন হয় এই লক্ষণ থাকলে চোখ ওঠা ছোঁয়াচে হয় কনট্যাক্ট লেন্স পড়লে অস্বস্তি হওয়া অথবা লেন্স চোখে ঠিকমতো না বসা চোখ ওঠার পেছনের প্রকৃত কারণটি খুঁজে বের করা বেশ কঠিন বিভিন্ন কারণে চোখ উঠলেও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই লক্ষণগুলো প্রায় একই ধরনের হয় তবে কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট লক্ষণের ওপরে ভিত্তি করে চোখ ওঠার কারণ সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় চোখ ওঠার পেছনে মূলত দুটি কারণ দায়ী— ভাইরাস অথবা ব্যাকটেরিয়া ইনফেকশনসাধারণত ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া জাতীয় জীবাণু দিয়ে ইনফেকশন হলে চোখ ওঠেএর মধ্যে কিছু ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া একজন থেকে আরেকজনে দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন ইনফেকশনের কারণে চোখ উঠলে সেটি সাধারণত খুব ছোঁয়াচে হয় ভাইরাস জনিত চোখ ওঠার লক্ষণএক্ষেত্রে সর্দিকাশি অথবা ফ্লুর মতো লক্ষণ থাকতে পারে প্রথমে সাধারণত এক চোখে লক্ষণ দেখা দেয় কয়েকদিনের মধ্যে অপর চোখও আক্রান্ত হতে পারে চোখ দিয়ে সাধারণত পাতলা ধরনের তরল বা পানি বের হয়ব্যাকটেরিয়া জনিত চোখ ওঠার লক্ষণএক্ষেত্রে সাধারণত চোখে পুঁজ জমে ফলে চোখের পাতা একে অপরের সাথে সাময়িকভাবে জোড়া লেগে যেতে পারে[৭] এটি কখনো কখনো কানের ইনফেকশনের সাথে একই সময়ে দেখা দিতে পারে এলার্জির কারণে সর্দি ও চুলকানির পাশাপাশি চোখ ওঠার মতো সমস্যাও দেখা দিতে পারেতবে এলার্জিজনিত চোখ ওঠা ছোঁয়াচে নয় এলার্জি জনিত চোখ ওঠার লক্ষণএক্ষেত্রে সাধারণত দুই চোখেই লক্ষণ দেখা দেয় চোখে প্রচণ্ড চুলকানি হতে পারে সেই সাথে পানি পড়া ও চোখ ফুলে যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে এলার্জিজনিত অন্যান্য রোগলক্ষণ থাকতে পারে যেমন নাকের ভেতরে চুলকানো হাঁচি গলা খুসখুস করা এলার্জিক রাইনাইটিস একজিমা নামক চর্মরোগ অথবা অ্যাজমা/হাঁপানি৩ অন্যান্য কারণএসব ছাড়া অন্যান্য যে কারণে চোখ উঠতে পারে— কেমিক্যাল বা রাসায়নিক পদার্থ কনট্যাক্ট লেন্স বাইরে থেকে চোখের ভেতরে কিছু ঢুকে যাওয়া যেমন ঝরে পড়া চোখের পাপড়ি[১২] বাড়ির ভেতর ও বাইরের বায়ু দূষক যেমন ধোঁয়া ধুলাবালি ও রাসায়নিক বাষ্প[১৩] যৌনবাহিত সংক্রমণ যেমন গনোরিয়া ও ক্ল্যামিডিয়া ইনফেকশন ছত্রাক বা ফাঙ্গাস অ্যামিবা ও অন্যান্য পরজীবীছবি বিভিন্ন কারণে চোখ ওঠা চোখ ওঠার জন্য সাধারণত ডাক্তার দেখানোর প্রয়োজন হয় না এটি বিশেষ কোনো চিকিৎসা ছাড়া কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিজে নিজেই সেরে ওঠে সহজ কিছু ঘরোয়া পরামর্শ মেনেই আপনি সাধারণত চোখ ওঠার লক্ষণ উপশম করতে পারবেন তবে ক্ষেত্রবিশেষে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি হয়ে পড়তে পারেউল্লেখ্য চোখ ওঠা অনেক ক্ষেত্রেই খুব ছোঁয়াচে হতে পারে তাই এটি ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সতর্কতা অবলম্বন করা খুব গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলের পরের অংশে চোখ ওঠা প্রতিরোধ সম্পর্কে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছেচোখ ওঠার ঘরোয়া চিকিৎসাচোখে ঠান্ডা পানির সেঁক নিতে পারেন এতে চোখ ফোলা ও জ্বালাপোড়া কমে আসতে পারে এজন্য একটা হালকা ঠান্ডা ফ্লানেলের কাপড় কয়েক মিনিট চোখে আলতোভাবে ধরে রাখবেন এটি চোখ ঠান্ডা করে ফলে আরাম লাগতে পারে চোখ পরিষ্কার করার জন্য পানি ফুটিয়ে জীবাণুমুক্ত করে ঠান্ডা করে নিন এবার এক টুকরো পরিষ্কার সুতি কাপড় সেই পানিতে ভিজিয়ে নিয়ে আলতোভাবে চোখের পাপড়িগুলো মুছে নিন এভাবে চোখে জমে শক্ত হয়ে যাওয়া পুঁজ ও ময়লা সহজে পরিষ্কার করা যায় এক্ষেত্রে অবশ্যই প্রতি চোখের জন্য আলাদা আলাদা কাপড় ব্যবহার করবেন যাতে এক চোখের জীবাণু অন্য চোখে না ছড়িয়ে পড়ে কাপড়ের টুকরোর বদলে কটন প্যাডও ব্যবহার করতে পারেনচোখ পুরোপুরি সেরে ওঠার আগ পর্যন্ত চোখের ভেতরে কোনো ধরনের কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করবেন না এক্ষেত্রে প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিনচোখ ওঠার ঔষধচোখ উঠলে বিভিন্ন চোখ ওঠার ড্রপের সাহায্যে চিকিৎসা করা যায় যেমন—আর্টিফিশিয়াল টিয়ার এটি চোখের শুষ্ক ও খচখচে ভাব কমাতে সাহায্য করে যেকোনো ধরনের চোখ ওঠায় এই ধরনের ড্রপ ব্যবহার করা যায় ফার্মেসিতে এগুলো লুবজেল ড্রাইলাইফ অ্যাকুয়াফ্রেশ ও টিয়ারফ্রেশসহ বিভিন্ন নামে পাওয়া যায় ব্যবহারের আগে সাথে থাকা নির্দেশিকা ভালোমতো পড়ে সেই অনুযায়ী ব্যবহার করবেনঅ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ ব্যাকটেরিয়ার কারণে চোখ উঠলে এই ধরনের ড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় অ্যান্টিবায়োটিক দ্রুত ইনফেকশন সারাতে জটিলতা কমাতে ও চোখ ওঠা ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে সাহায্য করতে পারে[১৪]ব্যাকটেরিয়াজনিত চোখ ওঠার চিকিৎসায় সাধারণত নিচের ক্ষেত্রগুলোতে চোখে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়— চোখে পুঁজের মতো তরল জমলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল এমন কারও চোখ উঠলে কিছু বিশেষ ব্যাকটেরিয়া দিয়ে ইনফেকশন হয়েছে ধারণা করলে যেমন গনোরিয়া ও ক্ল্যামিডিয়াব্যাকটেরিয়া ছাড়া অন্য কোনো কারণে (যেমন ভাইরাস ও এলার্জি) চোখ উঠলে এই ধরনের ড্রপ কোনো কাজে আসে নাব্যাকটেরিয়াজনিত চোখ ওঠার চিকিৎসায় অনেকসময় ক্লোরামফেনিকল নামক অ্যান্টিবায়োটিক ড্রপ অথবা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয় এগুলো দুই বছরের বেশি বয়সী শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য প্রযোজ্য তবে ব্যবহারের আগে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেদুই বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ঔষধ ব্যবহার করা নিষেধঅ্যান্টিহিস্টামিন ড্রপ সাধারণত এলার্জির কারণে চোখ উঠলে কিংবা অতিরিক্ত চুলকানি হলে চোখে এই ধরনের ড্রপ ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হয়চোখের ড্রপ ও অয়েন্টমেন্টের পাশাপাশি ডাক্তার কখনো কখনো মুখে খাওয়ার ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন আপনি অথবা আপনার শিশু খুব অসুস্থ বোধ না করলে স্কুলে কিংবা কর্মক্ষেত্রে যেতে পারেন তবে জ্বর কিংবা অন্যান্য লক্ষণ থাকলে অথবা বাইরের কাজের মাধ্যমে সুস্থ ব্যক্তির নিকট সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকলে সেই ধরনের কাজ থেকে বিরত থাকা উচিত চোখ ওঠার সমস্যা সাধারণত ঘরোয়া চিকিৎসায় ভালো হয়ে যায় তবে চোখ ওঠার সাথে নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে— চোখে ব্যথা হওয়া চোখ আলোর প্রতি সংবেদনশীল হয়ে পড়া যেমন লাইট অথবা রোদের আলোতে চোখে কোনো সমস্যা হওয়া চোখে আলোর ঝলকানি কাঁপা কাঁপা দৃষ্টি অথবা আঁকাবাঁকা রেখা দেখতে পাওয়া দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া এবং চোখ পরিষ্কার করার পরেও ঝাপসা ভাব থেকে যাওয়া শরীরে র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি ওঠা এক অথবা উভয় চোখ তীব্র লাল হয়ে যাওয়া রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হওয়া যেমন ডায়াবেটিস অথবা এইচআইভি আক্রান্ত রোগী ক্যান্সারের চিকিৎসা নিচ্ছেন এমন অর্থাৎ কেমোথেরাপি অথবা রেডিওথেরাপির রোগী ও স্টেরয়েড সেবনকারী ব্যক্তি ব্যাকটেরিয়াজনিত চোখ ওঠার ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের ২৪ ঘণ্টা পরেও অবস্থার উন্নতি না হওয়া সময়ের সাথে চোখ ওঠার লক্ষণের অবনতি হওয়া কিংবা কোনো ধরনের উন্নতি না হওয়া বিশেষ করে দুই সপ্তাহ পরেও লক্ষণগুলো পুরোপুরি সেরে না ওঠা কনট্যাক্ট লেন্স পরার পর পরই চোখ ওঠার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়া পাশাপাশি চোখের পাতায় কোনো দাগ দেখা দেওয়া লেন্সের প্রতি এলার্জিক প্রতিক্রিয়ার কারণে এমন হতে পারেএগুলো চোখের কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে তাই দেরি না করে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া প্রয়োজন বিশেষ করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল এমন ব্যক্তিদের সাধারণ চোখ ওঠার ক্ষেত্রেও ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিতবাচ্চাদের চোখ ওঠায় করণীয়শিশুদের ক্ষেত্রে নিচের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন—দুই দিনের বেশি সময় ধরে এক অথবা উভয় চোখ লাল হয়ে থাকা দুই দিনের বেশি সময় ধরে চোখে ব্যথা কিংবা অস্বস্তি হওয়া দুই সপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে চোখ দিয়ে আঠালো তরল বের হওয়া কিংবা চোখ আটকে আটকে থাকা চোখ ওঠার লক্ষণের কারণে কষ্ট হওয়া২৮ দিনের কম বয়সী নবজাতকের চোখ ওঠার যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে সাথে সাথে ডাক্তার দেখানো জরুরি চোখ ওঠা কীভাবে ছড়িয়ে পড়ে সেটা জেনে রাখলে চোখ ওঠা প্রতিরোধ করা সহজ হয় অনেক ধরনের ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসের আক্রমণে চোখ উঠতে পারে এদের মধ্যে কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত চোখ ওঠা খুবই ছোঁয়াচে এসব জীবাণু সাধারণত যেসব উপায়ে সুস্থ ব্যক্তিতে ছড়ায়— আক্রান্ত ব্যক্তির সরাসরি সংস্পর্শ থেকে যেমন স্পর্শ ও হ্যান্ডশেকের মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির হাঁচিকাশি থেকে বাতাসের মাধ্যমে আক্রান্ত ব্যক্তির অনেক কাছাকাছি অবস্থান করলে জীবাণু সংক্রমিত যেকোনো জিনিস হাত দিয়ে ধরার পরে সেই হাত না ধুয়েই চোখে লাগালে যেমন দরজার হাতল বই টিস্যু কিংবা চোখ মোছার কাপড়ভ্রান্ত ধারণা চোখ ওঠা রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির দিকে তাকালে সুস্থ ব্যক্তির চোখও আক্রান্ত হয় আক্রান্ত ব্যক্তির চোখের দিকে তাকালেই কোনো সুস্থ ব্যক্তির চোখ আক্রান্ত হয় না এটি সম্পূর্ণ অবৈজ্ঞানিক ধারণা তবে কিছু কিছু ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাসজনিত চোখ ওঠা খুবই ছোঁয়াচে সেক্ষেত্রে আক্রান্ত ব্যক্তির স্পর্শ অথবা হাঁচিকাশির মাধ্যমে কিংবা খুব কাছাকাছি অবস্থান করলে আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে একজন সুস্থ ব্যক্তি আক্রান্ত হতে পারেন চোখ ওঠা আক্রান্ত ব্যক্তি থেকে সুস্থ ব্যক্তিতে সহজেই ছড়াতে পারে তবে কিছু সহজ উপায় মেনে চললেই চোখ ওঠা ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা যায়যা করবেন নিয়মিত হাত ধোয়া নিয়মিত কুসুম গরম পানি এবং সাবান দিয়ে কমপক্ষে ২০ সেকেন্ড ধরে হাত ধোবেন বিশেষ করে খাওয়ার আগে চোখে ড্রপ অথবা মলম লাগানোর আগে ও পরে এবং চোখ পরিষ্কার করার পরে হাত ধোয়া খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি হাতের কাছে সাবান না থাকে তাহলে হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিতে পারেন এক্ষেত্রে কমপক্ষে ৬০ অ্যালকোহলযুক্ত স্যানিটাইজার বেছে নিবেন[১৮] তবে হ্যান্ড স্যানিটাইজার পুরোপুরি শুকিয়ে যাওয়ার আগে চোখে হাত দিবেন না নাহলে চোখে জ্বালাপোড়া হতে পারে এ ছাড়া আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহৃত জিনিস (যেমন রুমাল কাপড় অথবা বিছানার চাদর) হাত দিয়ে ধরলে এবং আক্রান্ত ব্যক্তি অথবা শিশুর চোখে ঔষধ দিয়ে দেওয়ার পরে অবশ্যই সাবান ও কুসুম গরম পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলবেন হাঁচিকাশির সময়ে মুখ ঢেকে রাখা হাঁচিকাশির সময়ে টিস্যু অথবা রুমাল দিয়ে মুখ ঢাকবেন ব্যবহারের পর টিস্যুটি ময়লা ফেলার ঝুড়িতে ফেলে দিবেন রুমাল ব্যবহার করলে সেটি সাবান অথবা ডিটারজেন্ট দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন এরপর হাত সাবানপানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন চোখ পরিষ্কার করা চোখ থেকে কোনো পানি অথবা পুঁজ বের হলে দিনে কয়েকবার করে তা পরিষ্কার ভেজা কাপড় অথবা তুলা দিয়ে তা মুছে ফেলবেন[১৯] চোখে হাত দেওয়ার আগে অবশ্যই হাত পরিষ্কার করে নিবেন চোখ পরিষ্কার করা হয়ে গেলে ব্যবহৃত তুলা ফেলে দিতে হবে তবে কাপড় ব্যবহার করলে গরম পানি ও ডিটারজেন্ট দিয়ে কাপড় ধুয়ে ফেলবেন সবশেষে আবার নিজের হাত সাবান ও গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলবেন ব্যবহৃত কাপড় পরিষ্কার করা বালিশের কভার বিছানার চাদর গামছা তোয়ালে ও মুখে ব্যবহার করা কোনো কাপড় (যেমন নিকাব রুমাল ও মাস্ক) সাবান অথবা ডিটারজেন্ট ও গরম পানি দিয়ে নিয়মিত ধুয়ে ফেলবেন এসব ধরার পরে অর্থাৎ কাজ শেষে ভালো করে হাত ধুয়ে ফেলবেন চশমা ও ব্যবহার্য জিনিস পরিষ্কার রাখা চশমা ব্যবহারের প্রয়োজন হলে তা পরিষ্কার করে ব্যবহার করবেন নিজের ব্যবহৃত চশমা চশমার বক্স অথবা অন্য যেকোনো জিনিস (যেমন তোয়ালে ও রুমাল) পরিষ্কার করে এবং সতর্কতার সাথে ব্যবহার করতে হবে যাতে অন্য কেউ একই জিনিস ব্যবহার না করে কনট্যাক্ট লেন্স পরিষ্কার রাখা ডাক্তার কনট্যাক্ট লেন্স পড়া চালিয়ে দেওয়ার পরামর্শ দিলে চোখের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী কনট্যাক্ট লেন্স পরিষ্কার ও সংরক্ষণ করবেন[২০] এ ছাড়া নির্দেশিত সময় পর পর পুরনো লেন্স পাল্টে নতুন লেন্স ব্যবহার করবেনযা করবেন না চোখ পুরোপুরি সেরে ওঠার আগে নিচের কাজগুলো করা যাবে না— চোখে হাত দেওয়া চুলকানো অথবা ঘষাঘষি করা যাবে না এসব কাজ চোখের অবস্থা আরও খারাপ করে ফেলতে পারে এ ছাড়া এক চোখ থেকে আরেক চোখে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়তে পারে[২১] হাত না ধুয়ে কখনোই চোখে হাত দেওয়া যাবে না আক্রান্ত ও সুস্থ চোখের জন্য একই চোখের ড্রপের বোতল ব্যবহার করা যাবে না আলাদা আলাদা ড্রপ ব্যবহার করতে হবে নাহলে সুস্থ চোখও সংক্রমিত হতে পারে আক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার্য জিনিস অন্যদের সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করা যাবে না যেমন তোয়ালে গামছা রুমাল বালিশের কাভার চোখের ড্রপ মেকআপ সামগ্রী ও মেকআপ ব্রাশ চশমা কনট্যাক্ট লেন্স ও এগুলোর বক্স চোখ সেরে না ওঠা পর্যন্ত কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করা যাবে না তবে চোখের অবস্থা ভালো হয়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পুনরায় কনট্যাক্ট লেন্স ব্যবহার করা যেতে পারে সুইমিং পুল ব্যবহার করা যাবে না এ ছাড়া চোখ ওঠা সেরে যাওয়ার পরে পুনরায় চোখ ওঠা প্রতিরোধে— আক্রান্ত অবস্থায় ব্যবহৃত মেকআপ ব্রাশসহ সব ধরনের মেকআপ সামগ্রী ফেলে দিন আক্রান্ত অবস্থায় ব্যবহৃত কনট্যাক্ট লেন্স লেন্সের বক্স ও সলিউশন ফেলে দিন প্রতি বছর সারাবিশ্বে যত মানুষ অন্ধ হয়ে যান তার একটা বড় অংশ ঘটে জ্বর ঠোসার ভাইরাস এর কারণে এ ছাড়াও জ্বর ঠোসা থেকে যৌনাঙ্গের হার্পিস হতে পারে যা একবার হলে পুরোপুরি নির্মূল করার উপায় এখনো আবিষ্কৃত হয়নি নবজাতকের মাঝে ভাইরাসটি ছড়ালে তার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে জ্বর ঠোসা একটি ছোঁয়াচে রোগ এটি হার্পিস সিমপ্লেক্স নামের একটি ভাইরাসের কারণে হয় এই ভাইরাস শরীরে বিভিন্নভাবে প্রবেশ করতে পারে যেমন— জ্বর ঠোসায় আক্রান্ত ব্যক্তির মুখ কিংবা মুখের লালার সংস্পর্শে আসলে জ্বর ঠোসা ছড়াতে পারে জ্বর ঠোসা স্পর্শ করে সেই হাত অন্য কারও মুখের সংস্পর্শে নিলে জ্বর ঠোসা ছড়াতে পারে জ্বর ঠোসায় আক্রান্ত ব্যক্তির মুখ কারও যৌনাঙ্গের সংস্পর্শে আসলে যৌনাঙ্গে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়তে পারেশরীরে একবার জ্বর ঠোসার ভাইরাস প্রবেশ করলে সেটি সারাজীবন থেকে যায় বেশিরভাগ সময়ে ভাইরাস শরীরে নিষ্ক্রিয় অবস্থায় থাকে তবে মাঝেমাঝে জেগে উঠে জ্বর ঠোসা তৈরি করে একারণে অনেকের বারবার জ্বর ঠোসা হয়ভাইরাস জেগে ওঠার অন্যতম কারণ হলো শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়া যেমন ঠাণ্ডা লাগা অথবা জ্বর আসা তবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে পড়া ছাড়াও আরও কিছু কারণে ভাইরাস জেগে উঠে জ্বর ঠোসা তৈরি হতে পারে যেমন কোনো কারণে অসুস্থ হলে খুব ক্লান্ত থাকলে মানসিক চাপে থাকলে রোদে গেলে ও মেয়েদের মাসিকের সময়ে মুখমণ্ডলের যেকোনো স্থানেই জ্বর ঠোসা উঠতে পারে যেখানে জ্বর ঠোসা উঠবে সেখানে সাধারণত জ্বর ঠোসা হওয়ার আগেই জ্বালাপোড়া ঝিম ঝিম করা অথবা চুলকানি শুরু হয় পরবর্তী ৬–৪৮ ঘণ্টায়—১ ছোটো ছোটো ফোস্কা বা ঠোসা ওঠে এগুলোর ভেতরে পানির মতো তরল থাকে২ ফোস্কাগুলো ফেটে গিয়ে সেগুলোর ওপরে আস্তে আস্তে চলটা পড়ে ১০ দিনের মধ্যে জ্বর ঠোসা সেরে উঠতে শুরু করে সেরে ওঠার আগ পর্যন্ত এটি ছোঁয়াচে থাকে এই সময়ে ব্যথা অথবা জ্বালাপোড়া হতে পারে যেখানে জ্বর ঠোসা উঠবে সেখানে যখন থেকে জ্বালাপোড়া ঝিম ঝিম করা অথবা চুলকানি শুরু হয় তখন থেকেই এটা ছোঁয়াচে যতদিন পর্যন্ত আপনার জ্বর ঠোসা পুরোপুরি সেরে না ওঠে ততদিন এটা ছোঁয়াচে থাকে বিশেষ করে যখন জ্বর ঠোসা কাঁচা থাকে কিংবা ফেটে যায় তখন এটা সবচেয়ে বেশি ছোঁয়াচে থাকেতাই জ্বালাপোড়া ঝিম ঝিম করা অথবা চুলকানি শুরু হওয়া থেকে ঠোসা পুরোপুরি সেরে ওঠা পর্যন্ত এই পুরোটা সময় জুড়েই নিচের সতর্কতাগুলো মেনে চলবেনউল্লেখ্য জ্বর ঠোসা হওয়ার আগে ত্বকে যখন জ্বালাপোড়া ঝিম ঝিম করা অথবা চুলকানি শুরু হয় তখন থেকেই জ্বর ঠোসার অ্যান্টিভাইরাল ক্রিম ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভালো হয় এতে জ্বর ঠোসা দ্রুত সেরে উঠতে পারে এই সম্পর্কে আরও জানতে নিচে জ্বর ঠোসার ঔষধ অংশটি পড়ুন চোখের সুরক্ষা আমাদের চোখের সামনে কর্নিয়া নামের স্বচ্ছ একটা আবরণ থাকে এটা চোখের জানালা হিসেবে কাজ করে এই কর্নিয়ার সমস্যার কারণে পৃথিবীতে যত মানুষ অন্ধ হয়ে যায় তার মধ্যে সবচেয়ে কমন কারণ হলো জ্বর ঠোসার হার্পিস ভাইরাসের ইনফেকশনঅর্থাৎ মুখের জ্বর ঠোসা থেকে ভাইরাসটা যদি চোখে চলে যায় তাহলে এই মারাত্মক বিপত্তি ঘটার একটা সম্ভাবনা তৈরি হয়জ্বর ঠোসা থেকে অন্ধত্ব হওয়া প্রতিরোধে চারটি পরামর্শ মেনে চলবেন— জ্বর ঠোসায় হাত লাগাবেন না জ্বর ঠোসায় হাত চলে গেলে ভালো করে সাবান পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিবেন জ্বর ঠোসা থাকা অবস্থায় চোখে হাত লাগাবেন না কোনো কারণে চোখে হাত দিতে হলে আগে ভালো করে হাত সাবানপানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন উল্লেখ্য চোখে হার্পিস ভাইরাস দিয়ে ইনফেকশন হলেই যে মানুষ অন্ধ হয়ে যায় তা নয় অনেকেরই এই ইনফেকশন হয় এবং সেরেও যায় তাই এটা নিয়ে বেশি ভয় পাবেন না তবে অল্প সংখ্যক মানুষের ক্ষেত্রে এটা চোখের জটিল ইনফেকশনে রূপ নিতে পারে তাই সতর্ক থাকাই শ্রেয় যৌনাঙ্গের হার্পিস থেকে সুরক্ষাকারও যৌনাঙ্গ জ্বর ঠোসার সংস্পর্শে আসলে যৌনাঙ্গের হার্পিস হতে পারে জ্বর ঠোসার মতোই একবার যৌনাঙ্গের হার্পিস হলে সেটিকে পুরোপুরি সারিয়ে তোলা সম্ভব হয় না তা ছাড়া নারীদের যৌনাঙ্গের হার্পিস হলে সেটি ডেলিভারির সময়ে নবজাতকের মাঝে ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা থাকেতাই জ্বর ঠোসা পুরোপুরি সেরে ওঠার আগ পর্যন্ত ওরাল সেক্স থেকে একেবারে বিরত থাকবেন অর্থাৎ সঙ্গীর যৌনাঙ্গে মুখ লাগাবেন না নাহলে আপনার সঙ্গীর যৌনাঙ্গে হার্পিস ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়তে পারে নবজাতক ও দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মানুষের সুরক্ষাযাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল তাদের জন্য হার্পিস ভাইরাস মারাত্মক হতে পারে যেমন জ্বর ঠোসা থাকা অবস্থায় নবজাতককে চুমু দিলে শিশুর মারাত্মক ইনফেকশন হতে পারে এমনকি তার মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এ ছাড়া মায়ের স্তনে যদি জ্বর ঠোসা হয়ে থাকে তাহলে শিশুকে সেই স্তন থেকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়েও শিশুর দেহে ইনফেকশন ছড়িয়ে যেতে পারে তাই নবজাতকদের ব্যাপারে বিশেষভাবে সতর্ক থাকবেনকারও একজিমা নামের চর্মরোগ থাকলে জ্বর ঠোসার ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে কেননা এক্ষেত্রে চামড়ার ক্ষত দিয়ে জ্বর ঠোসার ভাইরাস শরীরের ভেতরে প্রবেশ করে জীবনঘাতী ইনফেকশনে রূপ নিতে পারে ছোটো শিশুদের ক্ষেত্রে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে কারণ তাদের এই গুরুতর ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশিএ ছাড়া যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল—যেমন গর্ভবতী নারী ডায়াবেটিস আক্রান্ত ব্যক্তি কেমোথেরাপি নিচ্ছেন কিংবা স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ খাচ্ছেন এমন রোগী—তাদের আশেপাশে বিশেষভাবে সাবধান থাকবেন কারণ সাধারণ জ্বর ঠোসাও তাদের শরীরে মারাত্মক ইনফেকশন ঘটিয়ে বিশেষ ক্ষতি করতে পারেআলঝেইমার নামক স্মৃতিশক্তি সংক্রান্ত রোগ থেকে সুরক্ষাস্মৃতিশক্তি কমে গিয়েছে কথা মনে রাখতে পারেন না একই প্রশ্ন বারবার জিজ্ঞেস করেন অথবা কিছু বলতে গেলে কথা খুঁজে পান না—এমন বয়স্ক মানুষ হয়তো দেখে থাকবেন এগুলো সবই আলঝেইমার রোগের লক্ষণ সাম্প্রতিক কিছু গবেষণায় জ্বর ঠোসা সৃষ্টিকারী হার্পিস ভাইরাসের সাথে আলঝেইমার রোগের সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া গিয়েছেযদিও এই ভাইরাসের কারণেই রোগটা হয় কি না সেটি এখনো নিশ্চিত নয় তবে অনেকগুলো গবেষণা সেই দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছেতাই আপনার যদি জ্বর ঠোসা হয় তাহলে খুব সতর্কতার সাথে খেয়াল রাখবেন যেন আপনার কাছ থেকে আরেকজনের কাছে এই ভাইরাস না ছড়ায় কারণ একবার এই ভাইরাস শরীরে ঢুকলে সারাজীবন থেকে যায় আর আলঝেইমারের মতো জটিল রোগের সাথে এর একটা যোগসূত্র পাওয়া যাচ্ছেকীভাবে এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করতে পারেন এই সংক্রান্ত পরামর্শগুলো আমরা জ্বর ঠোসা হলে কী করা উচিত অংশে তুলে ধরেছি সাধারণত জ্বর ঠোসা নিজে নিজেই সেরে যায় সেরে যাওয়ার পরে সাধারণত কোনো দাগও থাকে না তবে লক্ষণ উপশমে আপনি কিছু কার্যকর পরামর্শ মেনে চলতে পারেনজ্বর ঠোসার ঘরোয়া চিকিৎসা নিলে জ্বর ঠোসা দ্রুত সারাতে সক্ষম হয় দ্রুত সারাতে অ্যান্টিভাইরাল ক্রিম বা মলম জ্বর ঠোসা হবে বুঝতে পারার সাথে সাথেই অ্যান্টিভাইরাল ক্রিম লাগাতে পারেন এটা জ্বর ঠোসা দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে ক্রিম লাগানোর সময়ে জ্বর ঠোসায় ঘষে ঘষে না লাগিয়ে আঙ্গুল দিয়ে আলতো করে চেপে চেপে লাগাবেন ক্রিম লাগানোর আগে ও পরে ভালো করে সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে নিবেন কোন ক্রিম লাগাবেন তা জানতে নিচে জ্বর ঠোসার ঔষধ অংশটি পড়ুন দ্রুত সারাতে মধু কিছু গবেষণায় জ্বর ঠোসা সারাতে অ্যান্টিভাইরাল ক্রিমের পরিবর্তে মেডিকেল গ্রেড কানুকা মধু ব্যবহার করে দেখা গিয়েছে যে মধু অ্যান্টিভাইরাল ক্রিমের মতোই কার্যকর ভালো মানের কানুকা অথবা অন্য কোনো বিশুদ্ধ মধু ব্যবহার করে দেখতে পারেন আপনার জন্য কাজ করে কি না জ্বর ঠোসা হবে বুঝতে পারার সাথে সাথেই সেখানে মধু লাগাবেন দিনে পাঁচ বার করে জ্বর ঠোসা পুরোপুরি সেরে ওঠা পর্যন্ত এভাবে ব্যবহার করবেন ব্যথা কমানোর উপায় জ্বর ঠোসার ব্যথা কমানোর কয়েকটা উপায় আছে আপনার সুবিধামতো নিচের উপায়গুলো ব্যবহার করতে পারেন— বরফ জ্বর ঠোসার ওপরে বরফ লাগাতে পারেন[১৩] এ ছাড়া বরফের ছোটো ছোটো টুকরা চুষতে পারেন এসবের মাধ্যমে ব্যথা কমার পাশাপাশি জ্বালাপোড়া ও চুলকানিও কমতে পারে ঠাণ্ডা সেঁক দিনে কয়েকবার ঠাণ্ডা সেঁক দিতে পারেন একটা পরিষ্কার ছোটো তোয়ালে ঠাণ্ডা পানিতে ভিজিয়ে ৫–১০ মিনিট জ্বর ঠোসার ওপরে দিয়ে রাখুন এটি জ্বালাপোড়া ও লালচে ভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে মলম জ্বর ঠোসার ব্যথা কমাতে লিডোকেইন জাতীয় জেল অথবা মলম ব্যবহার করতে পারেন ফার্মেসিতে কোন নামে কিনতে পাওয়া যায় তা জানতে নিচে জ্বর ঠোসার ঔষধ অংশটি পড়ুন ঔষধ ব্যথা জ্বর ও ফোলা কমাতে প্যারাসিটামল অথবা আইবুপ্রোফেন খেতে পারেন শিশুদের প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়াতে পারেন পানিশূন্যতা এড়ানো জ্বর ঠোসা হলে ব্যথার কারণে অনেকেই খাবার ও পানি খাওয়া কমিয়ে দেয় একারণে পানিশূন্যতা দেখা দেয় তাই পর্যাপ্ত পানি পান করছেন কি না সেদিকে খেয়াল রাখবেন ত্বক ফাটা এড়াতে পেট্রোলিয়াম জেলি ত্বক শুষ্ক হয়ে ফেটে যাওয়া এড়াতে জ্বর ঠোসার ওপরে ও এর আশেপাশের ত্বকে আলতো করে পেট্রোলিয়াম জেলি লাগাবেন এর আগে ও পরে অবশ্যই সাবানপানি দিয়ে ভালোমতো হাত ধুয়ে ফেলবেন রোদ থেকে সুরক্ষা রোদে বের হলে সানস্ক্রিন বিশেষ করে ঠোঁটে সানব্লক লিপ বাম (এসপিএফ ১৫ বা তার বেশি শক্তির) ব্যবহার করবেন বারবার জ্বর ঠোসা হওয়া ঠেকানো যেসব কাজ জ্বর ঠোসার ভাইরাসকে জাগিয়ে দিতে পারে সেগুলো এড়িয়ে চলবেন যেমন রোদ মানসিক চাপ ও অতিরিক্ত ক্লান্তি এতে পরবর্তীতে জ্বর ঠোসা হওয়ার সম্ভাবনা কমতে পারেযা করবেন না জ্বর ঠোসা হাত দিয়ে স্পর্শ করবেন না কোনো কারণে স্পর্শ করতে হলে (যেমন ঔষধ লাগানোর সময়ে) তার আগে ও পরে অবশ্যই সাবান ও পানি দিয়ে ভালোমতো হাত ধুয়ে ফেলবেন আক্রান্ত অবস্থায় কাউকে চুমু দিবেন না বিশেষ করে ছোটো শিশুদের চুমু দেওয়া থেকে একেবারেই বিরত থাকবেন জ্বর ঠোসা থাকা অবস্থায় আপনার খাবার অথবা পানি আরেকজনের সাথে শেয়ার করবেন না জ্বর ঠোসায় ছোঁয়া লাগে এমন জিনিসপত্র—যেমন আপনার ব্যবহার করা চামচ গ্লাস তোয়ালে রেজার লিপজেল ও লিপস্টিক—এগুলো আলাদা রাখবেন অন্য কেউ যেন ব্যবহার না করে সেই বিষয়ে সতর্ক থাকবেন জ্বর ঠোসা থাকলেও সহবাস করা যাবে তবে জ্বর ঠোসা পুরোপুরি সেরে ওঠার আগ পর্যন্ত ওরাল সেক্স বা যৌনাঙ্গে মুখ স্পর্শ করা থেকে একেবারে বিরত থাকবেন নাহলে আপনার সঙ্গীর যৌনাঙ্গে হার্পিস ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়তে পারে জ্বর ঠোসা থাকা অবস্থায় চোখে হাত লাগাবেন না কোনো কারণে চোখে হাত দিতে হলে আগে ভালো করে হাত সাবানপানি দিয়ে ধুয়ে নিবেন কারও কারও ক্ষেত্রে কিছু খাবার জ্বর ঠোসার সংস্পর্শে আসলে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে যেমন টমেটো কমলা মাল্টা জাম্বুরা অতিরিক্ত মসলাদার ও লবণযুক্ত খাবার আপনার এমন সমস্যা হলে এসব খাবার এড়িয়ে চলতে পারেন জরুরি প্রয়োজন না হলে জ্বর ঠোসা পুরোপুরি সেরে ওঠার আগ পর্যন্ত দাঁতের কোনো প্রসিডিউর না করানোই ভালোজ্বর ঠোসার ঔষধজ্বর ঠোসা সারানোর জন্য নিচের ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ব্যবহার করতে পারেন ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী ব্যবহার করা নিরাপদ তবে আপনার জন্য উপযুক্ত ডোজ সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে কিংবা ঔষধের বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন১ জ্বর ঠোসার ক্রিম বা মলম জ্বর ঠোসার চিকিৎসায় অ্যান্টিভাইরাল ক্রিম (যেমন এসাইক্লোভির) ব্যবহার করতে পারেন এগুলো জ্বর ঠোসা দ্রুত সারিয়ে তুলতে সাহায্য করতে পারে অন্তত ৪ দিন ব্যবহার করবেন সাধারণত দিনে ৫ বার ব্যবহার করতে হয় ব্যবহারের আগে ঔষধের সাথে থাকা নির্দেশিকা ভালোমতো পড়ে সেই অনুযায়ী ব্যবহার করবেন ফার্মেসিতে এই ক্রিম যেসব নামে পাওয়া যায়— ব্র্যান্ড নাম কোম্পানি ভাইরাক্স স্কয়ার ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ভাইরক্সি এসকেএফ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড অ্যাসেরাক্স অপসনিন ফার্মা লিমিটেড নোভাইরাক্স ড্রাগ ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেড সিমপ্লোভির ইনসেপ্টা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড ভাইরুনিল গ্লোব ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড জ্বর ঠোসার ক্রিম বা মলম২ ব্যথা কমানোর মলম জ্বর ঠোসার ব্যথা কমাতে লিডোকেইন জাতীয় জেল অথবা মলম ব্যবহার করতে পারেন ব্যবহারের আগে ঔষধের সাথে থাকা নির্দেশিকা ভালোমতো পড়ে সেই অনুযায়ী ব্যবহার করবেন তবে শিশুদের ক্ষেত্রে এসব ঔষধ ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ফার্মেসিতে এই মলম যেসব নামে পাওয়া যায়—ব্র্যান্ড নাম কোম্পানি জেসোকেইন জেসন ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড জাইলোজেল ইউনিমেড ইউনিহেলথ ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড জেডলিডোকেইন জিসকা ফার্মাসিউটিক্যালস লিমিটেড জ্বর ঠোসার ব্যথা কমানোর মলম৩ প্যারাসিটামল অথবা আইবুপ্রোফেন জ্বর ঠোসার ব্যথা ফোলা ও জ্বর কমাতে প্যারাসিটামল অথবা আইবুপ্রোফেন খেতে পারেন শিশুদের প্যারাসিটামল সিরাপ খাওয়াতে পারেন কোন ডোজে খাওয়াবেন সেটি জানতে আমাদের আর্টিকেল থেকে দেখে নিন অথবা ঔষধের সাথে থাকা নির্দেশিকা থেকে পড়ে নিনকখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে যেমন গর্ভবতী নারী ডায়াবেটিস বা ক্যান্সার আক্রান্ত ব্যক্তি কেমোথেরাপি নিচ্ছেন কিংবা স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ খাচ্ছেন এমন রোগী চোখের কাছাকাছি স্থানে জ্বর ঠোসা হলে অনেকখানি জায়গা জুড়ে জ্বর ঠোসা হলে কিংবা ঠোসা ছড়িয়ে পড়লে জ্বর ঠোসা শরীরের অন্য কোথাও যেমন হাতে অথবা যৌনাঙ্গে ছড়িয়ে পড়লে খুব বেশি ব্যথা হলে খাওয়াদাওয়ায় অনেক সমস্যা হলে অথবা জ্বর না কমলে মুখের ভেতরে ঘা হলে এবং মাড়ি ফুলে গিয়ে ব্যথা হলে এগুলো মুখ ও মাড়ির ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে ১০ দিন পরেও জ্বর ঠোসা সেরে উঠতে শুরু না করলে কিছুদিন পরপরই (যেমন বছরে ছয় বারের বেশি) জ্বর ঠোসা হলে জ্বর ঠোসা নিয়ে দুশ্চিন্তা হলে জ্বর ঠোসার মতো দেখতে হলেও অন্য কোনো রোগ হয়েছে মনে হলে কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার আপনাকে অ্যান্টিভাইরাল ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনউল্লেখ্য নবজাতক শিশু গর্ভবতী নারী ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল কিংবা গুরুতর জ্বর ঠোসা হয়েছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে সঠিক চিকিৎসা জ্বর ঠোসা থেকে সৃষ্ট জটিলতা প্রতিরোধে সাহায্য করে সাধারণত জীবাণু পেটে ঢোকার কারণে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে আর সেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে কয়েকদিনের মাঝেই সেরে যায় তবে ডায়রিয়া থেকে যদি মারাত্মক পানিশূন্যতা হয় তবে তা মৃত্যুর কারণও হতে পারে পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করার উপায় ও পাতলা পায়খানা হলে কী করণীয় তা এই লেখায় থাকছেসাধারণত জীবাণু পেটে ঢোকার কারণে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে আর সেটা অধিকাংশ ক্ষেত্রে কয়েকদিনের মাঝেই সেরে যায় তবে ডায়রিয়া থেকে যদি মারাত্মক পানিশূন্যতা হয় তবে তা মৃত্যুর কারণও হতে পারে পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করার উপায় ও পাতলা পায়খানা হলে কী করণীয় তা এই লেখায় থাকছে আমরা সাধারণত ডায়রিয়া ও পাতলা পায়খানা শব্দ দুটি একই অর্থে ব্যবহার করি তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় আপনার পায়খানা নরম বা পাতলা হওয়া মানেই যে আপনার ডায়রিয়া হয়েছে এমনটি নয় সারাদিনে তিনবার বা তার বেশি নরম বা পাতলা পায়খানা হলে তাকেই সাধারণত ডায়রিয়া বলা হয় এছাড়া কারও যদি স্বাভাবিকের তুলনায় ঘনঘন পাতলা পায়খানা হয় সেটাকেও ডায়রিয়া হিসেবে ধরে নেওয়া হয়যে শিশুরা বুকের দুধ পান করে তাদের পায়খানা স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা নরম আর আঠালো হয় সেটা ডায়রিয়া নয় ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন লবণ বেরিয়ে যায় যখন এই ঘাটতি পূরণ করা হয় না তখনই পানিশূন্যতা দেখা দেয় আর এই পানিশূন্যতা মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে চলে গেলে তা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তাই ডায়রিয়ার প্রথম চিকিৎসা হলো পানিশূন্যতা পূরণ করা পানিশূন্যতার প্রধান লক্ষণগুলো হচ্ছে— মুখ শুকিয়ে আসা পিপাসা লাগা চোখ শুকনো লাগা বা খচখচ করা গাঢ় তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হওয়া প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া সাধারণত আপনি ঘরোয়াভাবেই পাতলা পায়খানার চিকিৎসা করতে পারবেন এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো পানিশূণ্যতা এড়াতে প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় ও খাবার খাওয়া১ পাতলা পায়খানা হলে কী খাবার খেতে হবেডায়রিয়া চিকিৎসায় মূল করণীয় হলো শরীরের পানি ও লবনের ঘাটতি মেটানো এজন্য ডায়রিয়া হলে প্রচুর পরিমাণে খাবার স্যালাইন তরল পানীয় ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত সাধারণত প্রতিবার পাতলা পায়খানা হওয়ার পর এক প্যাকেট বা আধা লিটার করে খাবার স্যালাইন খাওয়ার উপদেশ দেয়া হয় তরল পানীয়ের মধ্যে চিড়ার পানি ভাতের মাড় কিংবা ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে ভাতের মাড়ে সামান্য লবণ দিতে পারেনযখনই মনে হবে খেতে পারবেন তখনই খেয়ে নিবেন শিশুদের ক্ষেত্রে অবশ্যই বুকের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যেতে হবেডায়রিয়া হলে যা খাবেন না নির্দিষ্ট কোন খাবার খেলেই ডায়রিয়া সেরে যাবে এমন কথার ভিত্তি নেই যেমন এমন ধারণা প্রচলিত আছে যে ডায়রিয়ার রোগী সাদা ভাত আর কাঁচকলা ছাড়া আর কিছুই খেতে পারবে না এই ধারণা টা সঠিক নয় পাতলা পায়খানা হলেও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি সব ধরনের পুষ্টিকর খাবারই খাওয়া উচিত তবে ডায়রিয়া হলে বাজার থেকে কেনা ফলের জুস কোমল পানীয় কফি চিনি দেয়া চা পরিহার করবেন কারণ এসব খেলে ডায়রিয়া আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে২ ডায়রিয়ার ঔষধডায়রিয়া সাধারণত ৫৭ দিনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় তবে ডায়রিয়ার কারণে সৃষ্ট পানিশূন্যতার দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়িতে বসেই চিকিৎসার মাধ্যমে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নিচে ডায়রিয়ার ওষুধগুলো উল্লেখ করা হলো— খাবার স্যালাইন সাধারণত প্রতিবার পাতলা পায়খানা হওয়ার পর এক প্যাকেট বা আধা লিটার করে খাবার স্যালাইন খাওয়ার উপদেশ দেয়া হয় ঘরে খাবার স্যালাইন না থাকলেও ঘরোয়া উপায়ে খাবার স্যালাইন তৈরি করে নিতে পারেন এছাড়া চিড়ার পানি ভাতের মাড় কিংবা ডাবের পানিও খাওয়া যেতে পারে ভাতের মাড়ে সামান্য লবণ দিতে পারেন বমি ভাব হলে ছোট ছোট চুমুকে খাওয়ার চেষ্টা করবেন জিংক ট্যাবলেট গবেষণায় দেখা গেছে জিংক ট্যাবলেট ওষুধটি পাতলা পায়খানা হবার সময়কাল একচতুর্থাংশ কমিয়ে আনতে পারে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ১০১৪ দিনের জন্য ২০ মিলিগ্রাম করে জিংক ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ খাওয়াতে পারেন প্যারাসিটামল পেটে অস্বস্তি বোধ করলে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে শিশুকে ওষুধ দেওয়ার আগে ওষুধের সাথে থাকা নির্দেশিকা ভালো মত পড়ে নিবেন আর অবশ্যই বয়স অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে ওষুধ খাওয়াতে হবে লোপেরামাইডজাতীয় ওষুধ জরুরি প্রয়োজনে কয়েক ঘণ্টার জন্য পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে ডাক্তার আপনাকে লোপেরামাইডজাতীয় ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারে তবে ওষুধটি কখনই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এবং ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারেডায়রিয়ার ওষুধের সাথে পুষ্টিকর খাবারও খেতে হবে পুষ্টিহীনতা থেকে ডায়রিয়া হয় আবার ডায়রিয়ার কারণে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান শরীর থেকে বেরিয়ে যায় তাই ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের বুকের দুধ এবং সবার জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে তবে মনে রাখতে হবে মারাত্মক পানিশূন্যতা হলে হাসপাতালে ভর্তি করে ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় স্যালাইন দিতে হতে পারেডায়রিয়া হলে যেসব ওষুধ খাওয়া যাবে না ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ডায়রিয়া বন্ধ করার ওষুধ খাওয়া যাবে না ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের অ্যাস্পিরিন আছে এমন ওষুধ দিবেন না খেয়াল করে দেখবেন ওষুধের নামের নিচে ছোট করে ASPIRIN শব্দটি লেখা আছে কি না চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন অ্যান্টিবায়োটিক বা দ্রুত পাতলা পায়খানা বন্ধ করার ওষুধ খাবেন না পরিবারে ডায়রিয়ার বিস্তার রোধে করণীয় পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হলে রোগীর পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন এটি একদিকে আপনাকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে অন্যদিকে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে ডায়রিয়া সেরে যাওয়ার পরেও কমপক্ষে দুই দিন বাসায় থাকবেন বাচ্চাকে স্কুলে পাঠাবেন না বা নিজে কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাবেন না নাহলে অন্যদের মাঝেও এই পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া ছড়িয়ে যেতে পারেডায়রিয়া বিস্তার ঠেকাতে যা করবেন বারবার সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুবেন পায়খানা কিংবা বমির সংস্পর্শে এসেছে এমন কাপড় বা বিছানার চাদর গরম পানি দিয়ে আলাদাভাবে ধুয়ে ফেলবেন পানির কল দরজার হাতল টয়লেট সিট ফ্লাশের হাতল জীবাণুর সংস্পর্শে আসতে পারে এমন জায়গা প্রতিদিন পরিষ্কার করবেনডায়রিয়া হলে যা যা করবেন নাযদি সম্ভব হয় অন্যদের জন্য রান্না করা থেকে বিরত থাকুন আপনার থালাবাসন ছুরিচামচ গামছাতোয়ালে জামাকাপড় কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না লক্ষণগুলো চলে যাবার পর ২ সপ্তাহ পার হওয়ার আগে পুকুর বা সুইমিং পুলে নামবেন না ডায়রিয়া হলে যদি নিচের লক্ষণগুলোর কোনটি দেখা দেয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন ডায়রিয়ার গুরুতর লক্ষণগুলো হলো—পায়খানার সাথে রক্ত বা আঠালো মিউকাস যাওয়া প্রচণ্ড পেটব্যথা ডায়রিয়ার অবস্থার উন্নতি না হওয়া পানিশূন্যতা পূরণ না হওয়া ডায়রিয়ার সাথে ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জ্বর অর্থাৎ শরীরের তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি থাকাএগুলো গুরুতর অবস্থা নির্দেশ করে তাই ঘরোয়া চিকিৎসার সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করাটা খুব গুরুত্বপূর্ণ যে সকল কারণে সবচেয়ে বেশি ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে— পেটে জীবাণুর আক্রমণ বা ইনফেকশন হওয়া একে গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস ও বলা হয় এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কয়েকদিনের মাঝে সেরে ওঠে নরোভাইরাস নামের ভাইরাসের আক্রমণ ফুড পয়জোনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়াও পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার একটি কমন কারণ এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের খাদ্যে বিষক্রিয়া সংক্রান্ত আর্টিকেলটি পড়ুন সাধারণত জীবাণু পেটে ঢোকার কারণে শিশুদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে শিশুদের ক্ষেত্রে ডায়রিয়া একটি চিন্তার কারণ কেননা প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের ডায়রিয়া থেকে সৃষ্ট পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেশি দ্রুত চিকিৎসা শুরু করা না হলে এই পানিশূন্যতা মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে এখানে শিশুদের ডায়রিয়া ও ডায়রিয়াজনিত পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করার উপায় ও করণীয় নিয়ে আলোচনা করা হচ্ছেসাধারণত জীবাণু পেটে ঢোকার কারণে শিশুদের ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হয়ে থাকে আমরা সাধারণত ডায়রিয়া ও পাতলা পায়খানা শব্দ দুটি একই অর্থে ব্যবহার করি তবে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় পায়খানা নরম বা পাতলা হওয়া মানেই যে ডায়রিয়া হয়েছে বিষয়টি এমন নয় সারাদিনে তিনবার বা তার বেশি নরম বা পাতলা পায়খানা হলে তাকেই সাধারণত ডায়রিয়া বলা হয় যে শিশুরা বুকের দুধ পান করে তাদের পায়খানা স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা নরম আর আঠালো হয় সেটা ডায়রিয়া নয় তবে আপনার বাচ্চার যদি স্বাভাবিকের তুলনায় ঘনঘন পাতলা পায়খানা হয় সেটাকেও ডায়রিয়া হিসেবে ধরে নেওয়া হয় ডায়রিয়া হলে শরীর থেকে প্রচুর পানি ও প্রয়োজনীয় বিভিন্ন লবণ বেরিয়ে যায় যখন এই ঘাটতি পূরণ করা হয় না তখনই পানিশূন্যতা দেখা দেয় আর এই পানিশূন্যতা মাত্রাতিরিক্ত পর্যায়ে চলে গেলে তা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তাই ডায়রিয়ার প্রথম চিকিৎসা হলো পানিশূন্যতা পূরণ করা পানিশূন্যতার প্রধান লক্ষণগুলো হচ্ছে— মুখ শুকিয়ে আসা পিপাসা লাগা চোখ শুকনো লাগা বা খচখচ করা মুখ ও ঠোঁট শুকিয়ে আসা গাঢ় হলুদ তীব্র দুর্গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হওয়া প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া (২৪ ঘণ্টায় ৪ বারের চেয়েও কম প্রস্রাব হওয়া ) মাথা ঘুরানো বা ঝিমঝিম করা ক্লান্ত লাগা৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে আরও কিছু লক্ষণ দেখা যায় এসব লক্ষণ তুলনামূলকভাবে মারাত্মক তাই শিশুকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া জরুরি লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছেশ্বাসপ্রশ্বাস ও হৃৎস্পন্দন বেড়ে যাওয়া কান্না করলেও চোখ থেকে পানি না পড়া মাথার তালুর সামনের দিকের নরম অংশটি বসে যাওয়া এবং ঝিমিয়ে পড়া যেসব কারণে সবচেয়ে বেশি ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানার দেখা যায় তার মধ্যে রয়েছে — পেটে জীবাণুর আক্রমণ বা ইনফেকশন হওয়া একে গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস ও বলা হয় এটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে কয়েকদিনের মাঝে সেরে ওঠে নরোভাইরাস নামের ভাইরাসের আক্রমণ ফুড পয়জোনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়াও পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়ার একটি কমন কারণ এ নিয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের খাদ্যে বিষক্রিয়া সংক্রান্ত আর্টিকেলটি পড়ুনএছাড়াও যেসব কারণে ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা হতে পারে সেগুলো হলো—ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া – যে কোন ঔষধের সাথে দেওয়া নির্দেশিকা পড়ে দেখবেন ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো কী নির্দিষ্ট কোন খাবারে এলার্জি বা বিশেষ কোন খাবার সহ্য না হওয়া সিলিয়াক ডিজিজ কোভিড১৯ সাধারণত আপনি ঘরোয়াভাবেই শিশুর পাতলা পায়খানার চিকিৎসা করতে পারবেন এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো পানিশূণ্যতা এড়াতে প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় ও খাবার খাওয়া১ ডায়রিয়ায় শিশুদের পানিশূন্যতার চিকিৎসাডায়রিয়া চিকিৎসায় মূল করণীয় হলো শরীরের পানি ও লবণের ঘাটতি মেটানো এজন্য ডায়রিয়া হলে শিশুকে পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার স্যালাইনের পাশাপাশি প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়ানো উচিতপ্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৫০১০০ মিলি তরল পানীয় খাওয়াবেন ২ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের ১০০২০০ মিলি তরল পানীয় খাওয়াবেন আর ১০ বছরের বেশী বয়সী শিশুদের তরল পানীয় খাওয়াবেন যতটুকু তারা খেতে পারে ২ বাচ্চাদের ডায়রিয়া হলে কি খাওয়া উচিত শিশুকে বুকের দুধ বা বোতলের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যাবেন শিশু বমি করলে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়াতে পারেন তরল পানীয়ের মধ্যে চিড়ার পানি ভাতের মাড় কিংবা ডাবের পানি খাওয়া যেতে পারে ভাতের মাড়ে সামান্য লবণ দিতে পারেন ফর্মুলা বা শক্ত খাবার খাচ্ছে এমন শিশুদের দুই বেলা খাবারের মাঝে ছোট ছোট চুমুকে পানি খাওয়াবেন শিশুকে প্রতি তিনচার ঘণ্টা পর পর খাওয়াবেন একবারে অনেক বেশী খাবার না দিয়ে বার বার অল্প অল্প করে খাওয়ানো শ্রেয় শিশুদের ফর্মুলা যে পরিমাণে নির্দেশনা দেওয়া আছে সেভাবেই বানিয়ে খাওয়াবেন তার চেয়ে পাতলা ফর্মুলা বানিয়ে বাচ্চাকে খাওয়াবেন নাডায়রিয়া হলে যা খাওয়াবেন না নির্দিষ্ট কোন খাবার দিলেই শিশুর ডায়রিয়া সেরে যাবে এমন কথার ভিত্তি নেই যেমন এমন ধারণা প্রচলিত আছে যে ডায়রিয়ার রোগী সাদা ভাত আর কাঁচকলা ছাড়া আর কিছুই খেতে পারবে না এই ধারণা টা সঠিক নয় পাতলা পায়খানা হলেও পরিচ্ছন্ন পরিবেশে তৈরি সব ধরনের পুষ্টিকর খাবারই খাওয়া উচিত তবে ডায়রিয়া হলে শিশুকে বাজার থেকে কেনা ফলের জুস কোমল পানীয় ইত্যাদি খাওয়ানো থেকে বিরত থাকবেন কারণ এসব খাওয়ানোর ফলে ডায়রিয়া আরো খারাপ হয়ে যেতে পারে৩ ডায়রিয়ার ঔষধ দিলে সাধারণত ৫৭ দিনের মধ্যে স্বাভাবিকভাবে বন্ধ হয়ে যায় তবে ডায়রিয়ার কারণে সৃষ্ট পানিশূন্যতার দ্রুত চিকিৎসা প্রয়োজন বেশিরভাগ ক্ষেত্রে বাড়িতে বসেই চিকিৎসার মাধ্যমে ডায়রিয়া থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব নিচে ডায়রিয়ার ঔষধগুলো উল্লেখ করা হলো —১ খাবার স্যালাইন সাধারণত প্রতিবার পাতলা পায়খানা হওয়ার পরে শিশুকে বয়স অনুপাতে উপরের পরিমাণে খাবার স্যালাইন খাওয়ানোর উপদেশ দেয়া হয় ঘরে খাবার স্যালাইন না থাকলেও ঘরোয়া উপায়ে খাবার স্যালাইন তৈরি করে নিতে পারেন এছাড়া চিড়ার পানি ভাতের মাড় কিংবা ডাবের পানিও দেওয়া যেতে পারে ভাতের মাড়ে সামান্য লবণ দিতে পারেন বমি ভাব হলে একটু একটু করে খাওয়ানোর চেষ্টা করবেন২ জিংক ট্যাবলেট গবেষণায় দেখা গেছে জিংক ট্যাবলেট ঔষধটি পাতলা পায়খানা হবার সময়কাল একচতুর্থাংশ কমিয়ে আনতে পারে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুকে ১০১৪ দিনের জন্য ২০ মিলিগ্রাম করে জিংক ট্যাবলেট কিংবা সিরাপ খাওয়াতে পারেন৩ প্যারাসিটামল পেটে অস্বস্তি বোধ করলে প্যারাসিটামল খাওয়া যেতে পারে শিশুকে ঔষধ দেওয়ার আগে ঔষধের সাথে থাকা নির্দেশিকা ভালো মত পড়ে নিবেন আর অবশ্যই বয়স অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে ঔষধ খাওয়াতে হবে৪ লোপেরামাইডজাতীয় ঔষধ জরুরি প্রয়োজনে কয়েক ঘণ্টার জন্য পাতলা পায়খানা বন্ধ করতে ডাক্তার লোপেরামাইডজাতীয় ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন তবে ঔষধটি কখনই ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ক্ষেত্রে ব্যবহার করা যাবে না এতে স্বাস্থ্যের ক্ষতি হতে পারেডায়রিয়ার ঔষধের সাথে বাচ্চাকে পুষ্টিকর খাবারও খাওয়াতে হবে পুষ্টিহীনতা শিশুদের ডায়রিয়ার একটি অন্যতম কারণ আবার ডায়রিয়ার কারণে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান শরীর থেকে বেরিয়ে যায় তাই ছয় মাসের কম বয়সী শিশুদের বুকের দুধ খাওয়ানো এবং বড় শিশুদের জন্য পুষ্টিকর খাবার খাওয়া চালিয়ে যেতে হবে তবে মনে রাখতে হবে মারাত্মক পানিশূন্যতা হলে হাসপাতালে ভর্তি করে ইনজেকশনের মাধ্যমে শিরায় স্যালাইন দিতে হতে পারেডায়রিয়া হলে যেসব ঔষধ খাওয়া যাবে না ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ডায়রিয়া বন্ধ করার ঔষধ খাওয়া যাবে না ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের অ্যাসপিরিন আছে এমন ঔষধ দিবেন না খেয়াল করে দেখবেন ঔষধের নামের নিচে ছোট করে ASPIRIN শব্দটি লেখা আছে কি না চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোন অ্যান্টিবায়োটিক বা দ্রুত পাতলা পায়খানা বন্ধ করার ঔষধ খাওয়াবেন না পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া হলে রোগীর পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া প্রয়োজন এটি একদিকে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে অন্যদিকে ডায়রিয়া ছড়িয়ে পড়া বন্ধ করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেডায়রিয়া সেরে যাওয়ার পরেও কমপক্ষে দুই দিন শিশুকে বাসায় রাখবেন বাচ্চাকে স্কুলে বা মাঠে খেলতে পাঠাবেন না নাহলে অন্যদের মাঝেও এই পাতলা পায়খানা বা ডায়রিয়া ছড়িয়ে যেতে পারে ডায়রিয়া বিস্তার ঠেকাতে যা করবেন— বারবার সাবান ও পানি দিয়ে শিশুর হাত ধোওয়া নিশ্চিত করবেন পায়খানার সংস্পর্শে এসেছে এমন কাপড় বা বিছানার চাদর গরম পানি দিয়ে আলাদাভাবে ধুয়ে ফেলবেন পানির কল দরজার হাতল টয়লেট সিট ফ্লাশের হাতল জীবাণুর সংস্পর্শে আসতে পারে এমন জায়গা প্রতিদিন পরিষ্কার করবেনডায়রিয়া হলে যা যা করবেন না বাচ্চার থালাবাসন ছুরিচামচ গামছাতোয়ালে জামাকাপড় কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করাবেন না লক্ষণগুলো চলে যাবার পর ২ সপ্তাহ পার হওয়ার আগে পুকুর বা সুইমিং পুলে বাচ্চাকে নামাবেন না ডায়রিয়া হলে যদি নিচের লক্ষণগুলোর কোনটি দেখা দেয় তাহলে দেরী না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন ডায়রিয়ার গুরুতর লক্ষণগুলো হলো— পায়খানার সাথে রক্ত বা আঠালো মিউকাস যাওয়া প্রচণ্ড পেটব্যথা ডায়রিয়ার অবস্থার উন্নতি না হওয়া ১২ ঘণ্টায় একবারও প্রস্রাব না হওয়া পানিশূন্যতা পূরণ না হওয়া – এর লক্ষণগুলো উপরে বলা হয়েছে ডায়রিয়ার সাথে ৪৮ ঘণ্টার বেশি সময় ধরে জ্বর অর্থাৎ শরীরের তাপমাত্রা ১০১ ডিগ্রি ফারেনহাইটের বেশি থাকা এবং শিশুর হাতপা ঠাণ্ডা হয়ে আসা ও ত্বকে ছোপছোপ দাগ হওয়া ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বাড়িয়ে দেয়ডায়াবেটিস এমন একটি রোগ যা রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক বাড়িয়ে দেয়ইনসুলিন নামের একটি হরমোন আপনার রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করে থাকে এই হরমোনটি পাকস্থলীর পেছনে থাকা অগ্ন্যাশয় বা প্যানক্রিয়াস নামের একটি গ্রন্থি থেকে তৈরি হয়যখন খাবার পরিপাক হয়ে আপনার রক্তে প্রবেশ করে তখন এই ইনসুলিন রক্ত থেকে সুগার (গ্লুকোজ) কোষের ভেতরে ঢুকিয়ে সেটাকে ভেঙ্গে শক্তি উৎপাদন করে কিন্তু ডায়াবেটিস হলে আপনার দেহ সুগার তথা গ্লুকোসকে ভেঙ্গে এভাবে শক্তি উৎপাদন করতে পারে না মূলত দুটি কারণের ওপর ভিত্তি করে ডায়াবেটিসকে প্রধান দুই ভাগে ভাগ করা হয়টাইপ ১ ডায়াবেটিস গ্লুকোজকে কোষের ভেতরে সরিয়ে নেয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণ ইনসুলিন আপনার দেহে থাকে না টাইপ ১ ডায়বেটিসে এমনটি হয় কারণ এতে দেহের নিজস্ব রোগপ্রতিরোধ ব্যবস্থা (ইমিউন সিস্টেম) আপনার ইনসুলিন উৎপাদনকারী কোষগুলোকে আক্রমণ করে ধ্বংস করে দেয়টাইপ ২ ডায়াবেটিস আপনার দেহে যে ইনসুলিন তৈরী হয়েছে তা সঠিকভাবে কাজ করছে না টাইপ ২ ডায়াবেটিসে এটি দেখা যায় কারণ এতে দেহে পর্যাপ্ত পরিমানে ইনসুলিন তৈরি হয় না অথবা পর্যাপ্ত ইনসুলিন তৈরি হলেও দেহের কোষগুলো সেই ইনসুলিনের প্রতি সংবেদনশীল থাকে নাটাইপ ১ ডায়াবেটিসের তুলনায় টাইপ ২ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা অনেক বেশি সচরাচর ডায়াবেটিস বলতে টাইপ ২ ডায়াবেটিসকেই বোঝানো হয়ে থাকেএই দুটি প্রকার ছাড়াও ডায়াবেটিসের আরও প্রকারভেদ রয়েছে এর মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য হল গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes) গর্ভবতী নারীদের অনেকের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় রক্তে সুগারের মাত্রা এতটা বেড়ে যায় যে তা নিয়ন্ত্রণ করার জন্য দেহে যথেষ্ট পরিমাণে ইনসুলিন তৈরী হয় না তখন এই ডায়াবেটিস দেখা দেয় এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নিয়ে লেখা আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন অনেকেই নিজের অজান্তে টাইপ ২ ডায়াবেটিসে ভুগেন প্রায়ই দেখা যায় ভিন্ন ধরনের কোনো অসুখ বা সমস্যার জন্য যখন রক্ত কিংবা প্রস্রাব পরীক্ষা করানো হয় তখন এই ডায়াবেটিস ধরা পড়েকারও ডায়াবেটিস থাকলে সেটা দ্রুত সনাক্ত করা প্রয়োজন কারণ সময়মতো ডায়াবেটিস ধরা না পড়লে অর্থাৎ চিকিৎসা না নিলে এটি দিন দিন শরীরকে আরও বেশি অসুস্থ করে ফেলবে শুধু তাই নয় ডায়াবেটিস হলে আপনার অন্যান্য স্বাস্থ্য জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায় অনেক সময় নীরবে কোন লক্ষণ ছাড়াই এমন কিছু রোগ শরীরে বাসা বাঁধে যা আপনি বুঝতে পারেন না এজন্যই আমরা ডায়াবেটিস রোগীদের নিয়মিত চেকআপ করার পরামর্শ দিইস্বাস্থ্য জটিলতাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের ডায়াবেটিসের নানা স্বাস্থ্য জটিলতা ও আপনার করণীয় শীর্ষক আর্টিকেলটি পড়ুন অনেকেরই রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি থাকে কিন্তু এতটাও বেশি না যে তাদের ডায়াবেটিস রোগী বলা যায় এই অবস্থাকে বলে প্রিডায়াবেটিসআপনার রক্তে সুগারের মাত্রা যদি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকে তাহলে আপনার ভবিষ্যতে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেকটা বেড়ে যায় তাই রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক মাত্রার মধ্যে রাখতে এখনই ব্যবস্থা নিনসাধারণত একটি স্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে আপনি প্রিডায়াবেটিস থেকে ডায়াবেটিস হওয়া প্রতিরোধ করতে পারেন কারও কারও এর সাথে ক্ষেত্রে ওষুধের প্রয়োজন হতে পারে সেক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ডায়াবেটিস এর মূল লক্ষণগুলো দেখা দিলে অতি দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত এগুলোর মধ্যে রয়েছে অতিরিক্ত পিপাসা লাগা স্বাভাবিকের চেয়ে ঘনঘন প্রস্রাব হওয়া বিশেষ করে রাতের বেলা অতিরিক্ত ক্লান্ত বোধ করা ওজন কমে যাওয়া ও শরীর শুকিয়ে যাওয়া যৌনাঙ্গের আশেপাশে চুলকানো কিংবা বারবার থ্রাশ (Thrush – ছত্রাক/ফাঙ্গাস দিয়ে ইনফেকশন) হওয়া কাটাছেঁড়া বা অন্য কোন ক্ষত শুকাতে অনেক সময় লাগা দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়াবিশেষ তথ্য টাইপ ১ ডায়াবেটিসের লক্ষণগুলো কয়েক সপ্তাহ এমনকি কয়েক দিনের ব্যবধানেও দেখা দিতে পারে ও মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে অন্যদিকে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের শুরুর দিকে তেমন নির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে না বা সেগুলো শুরুতে দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় না এর ফলাফল হিসেবে অনেকে না বুঝেই এই রোগ নিয়ে বছরের পর বছর পার করে দেন আপনার লাইফস্টাইল বা জীবনধারার পরিবর্তন করলেও টাইপ ১ ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমানো সম্ভব হবে না তবে স্বাস্থ্যকর সুষম খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত ব্যায়াম করে শরীর সচল রেখে স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রাখার মাধ্যমে আপনি টাইপ ২ ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন ডায়াবেটিস ধরা পড়লে আপনাকে রক্তে সুগারের পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবে এজন্য স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে ও সুগারের পরিমাণ ঠিক আছে কি না দেখার জন্য নিয়মিত রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে ডায়াবেটিসের চেকআপ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিনএসব নিয়মকানুন মেনে চললে আপনি সারাজীবন ওষুধের সাহায্য ছাড়া ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন টাইপ ১ ডায়াবেটিস থাকলে এগুলোর পাশাপাশি আজীবন নিয়মিত ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে হয় গর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের রক্তে সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেড়ে গেলে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes Mellitus) বলা হয় এটি সাধারণত সন্তান প্রসবের পরে ঠিক হয়ে যায় গর্ভাবস্থার যেকোনো ধাপে এই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হতে পারে তবে ২য় বা ৩য় ত্রৈমাসিকের (৪র্থ থেকে ৯ম মাসের) সময় এটি হওয়া বেশি কমনগর্ভকালীন সময়ে গর্ভবতী মায়ের রক্তে সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেড়ে গেলে তাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস (Gestational Diabetes Mellitus) বলা হয় এটি সাধারণত সন্তান প্রসবের পরে ঠিক হয়ে যায় গর্ভাবস্থার যেকোনো ধাপে এই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হতে পারে তবে ২য় বা ৩য় ত্রৈমাসিকের (৪র্থ থেকে ৯ম মাসের) সময় এটি হওয়া বেশি কমনযখন আপনার শরীর গর্ভকালীন সময়ের বাড়তি চাহিদা অনুযায়ী ইনসুলিন তৈরি করতে পারেনা তখন এই সমস্যাটি দেখা দেয় ইনসুলিন হল এমন একটি হরমোন যা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করেগর্ভকালীন ডায়াবেটিস গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের পরে আপনার ও আপনার সন্তানের জন্য বিভিন্ন সমস্যার কারণ হতে পারে তবে যদি এটি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা নেয়া হয় তবে সমস্যাগুলোর ঝুঁকি অনেকটাই কমে আসে আপনার ও আপনার গর্ভের সন্তানের ওপর গর্ভকালীন ডায়াবেটিস কী ধরনের ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে তা জানতে পারবেন এই লেখায় যেকোন গর্ভবতী নারী গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হতে পারেন তবে কারও কারও ক্ষেত্রে ঝুঁকিটা অন্যদের তুলনায় বেশি এই ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার অন্যতম কারণগুলো হলঅতিরিক্ত ওজন আপনার BMI যদি ৩০ এর চেয়ে বেশি হয় অতীতে আপনার কোন সন্তান যদি ৪৫ কেজি (১০ পাউন্ড) বা এর বেশি ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করে থাকে আগে যদি আপনি গর্ভধারণ করে থাকেন এবং সেই সময় যদি আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়ে থাকে আপনার বাবামা ভাইবোনের মধ্যে কারও যদি ডায়াবেটিস হয়ে থাকে দক্ষিণ এশীয় কৃষ্ণাঙ্গ আফ্রিকান ক্যারিবিয়ান বা মধ্যপ্রাচ্যের অধিবাসীদের ক্ষেত্রে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের প্রবণতা বেশি দেখা যায়এই পাঁচটি ক্ষেত্রের মধ্যে কোনোটি আপনার জন্য প্রযোজ্য হলে গর্ভাবস্থায় আপনার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের সাধারণত কোন বিশেষ লক্ষণ থাকে না অধিকাংশ ক্ষেত্রেই গর্ভকালীন চেকআপের সময় এটি ধরা পড়ে তবে কারও কারও ক্ষেত্রে রক্তে সুগারের মাত্রা অনেকখানি বেড়ে গেলে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন ঘন ঘন পিপাসা লাগা আগের তুলনায় ঘনঘন প্রস্রাবের বেগ আসা মুখ শুকিয়ে যাওয়া ও ক্লান্ত বোধ করাএই লক্ষণগুলো দেখা দেওয়া মানেই যে আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়েছে তা নয় কিছু লক্ষণ স্বাভাবিকভাবেই গর্ভাবস্থায় দেখা যায় তবে আপনার মধ্যে যদি এমন কোন লক্ষণ থাকে আর তা নিয়ে আপনি চিন্তিত বোধ করেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকার পরেও গর্ভকাল অনেকটাই স্বাভাবিক থাকে এবং গর্ভের সন্তানও সুস্থভাবেই জন্মগ্রহণ করে তবে কিছু ক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর কিছু সমস্যা হতে পারে এবং প্রসবকালীন নানা জটিলতা দেখা দিতে পারে যেমন সন্তান আকারে স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হওয়া এর ফলে প্রসবের সময় বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে গর্ভাবস্থার ৩৭তম সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই সন্তান প্রসব হয়ে যাওয়া একে বলা হয় প্রিম্যাচিউর লেবার শিশু গর্ভে যেই তরল দিয়ে ঘেরা থাকে (অ্যামনিওটিক তরল) তার পরিমাণ বেশি হলে সঠিক সময়ের আগেই প্রসব হয়ে যেতে পারে একে বলে পলিহাইড্রামনিওস গর্ভবতী অবস্থায় ব্লাড প্রেশার বেড়ে যাওয়া সংক্রান্ত সমস্যা চিকিৎসা না করালে এটি গর্ভকালীন বিভিন্ন মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে একে প্রিএক্লাম্পসিয়া বলে জন্মের পর আপনার শিশুর শরীরে সুগারের মাত্রা কমে যাওয়া বা শিশুর শরীরের ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলদেটে হয়ে যাওয়া (জন্ডিস হওয়া) – এর ফলে শিশুকে হাসপাতালে নিয়ে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন হতে পারেমৃত সন্তান প্রসব করা যদিও এটি খুবই বিরল গর্ভাবস্থার ৮ম থেকে ১২তম সপ্তাহের মধ্যে আপনার প্রথম চেকআপের সময়ে ডাক্তার আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি আছে কি না তা বের করার জন্য আপনাকে কিছু প্রশ্ন করবেন আপনার ক্ষেত্রে যদি এক বা একাধিক সম্ভাব্য ঝুঁকি থেকে থাকে তবে আপনাকে একটি স্ক্রিনিং পরীক্ষা করতে বলা হবে যার মাধ্যমে আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে কি না তা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে এই স্ক্রিনিং পরীক্ষার নাম ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট (OGTT) এটি সম্পন্ন করতে প্রায় ২ ঘণ্টার মত সময় লাগে এতে প্রথমে সকালবেলা খালি পেটে আপনার রক্ত পরীক্ষা করা হবে শর্ত হচ্ছে রক্ত পরীক্ষার আগের ৮১০ ঘন্টা কিছু খাওয়াবা ধূমপান করা যাবেনা তবে পানি পান করা যেতে পারে রক্ত পরীক্ষার পরে আপনাকে একটি নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্লুকোজযুক্ত তরল পান করতে দেয়া হবে এরপর ২ ঘন্টা বিরতির পরে আপনার শরীরে এই গ্লুকোজের জন্য কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে তা আবার রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হবে সাধারণত গর্ভাবস্থার ২৪২৮তম সপ্তাহ সময়কালে এই পরীক্ষাটি করা হয় তবে আপনার যদি এর আগে গর্ভাকালীন ডায়াবেটিস হয়ে থাকে তবে এবারের গর্ভাবস্থায় প্রথমবার ডাক্তার দেখানোর সময়ই আপনাকে OGTT পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেয়া হবে এই পরীক্ষার ফলাফল স্বাভাবিক আসলে পরবর্তীতে গর্ভের ২৪২৮তম সপ্তাহকালীন সময়ে আবার পরীক্ষাটি করাতে হবে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ক্ষেত্রে সম্ভাব্য জটিলতাগুলো এড়ানোর জন্য রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা প্রয়োজন বাসায় রক্তের সুগার মাপার যন্ত্র বা গ্লুকোমিটার থাকলে আপনি নিজেই নিয়মিত এই মাত্রা পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ও শরীরকে সচল রাখার মাধ্যমে রক্তে সুগারের মাত্রা কমিয়ে আনা সম্ভব তবে যদি এসবের পরেও রক্তে সুগারের মাত্রা না কমে সেক্ষেত্রে চিকিৎসার জন্য ওষুধের প্রয়োজন পড়বে – ওষুধটি হতে পারে ট্যাবলেট বা ইনসুলিন ইনজেকশন সম্ভাব্য সমস্যাগুলো এড়ানোর জন্য গর্ভাবস্থা ও প্রসবকালীন সময়ে আপনাকে নিয়মিত ডাক্তারের পর্যবেক্ষণে থাকতে হবেগর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকলে গর্ভের ৪১তম সপ্তাহের আগেই সন্তান প্রসব করা উত্তম এ সময়ের মধ্যে প্রাকৃতিক উপায়ে বা স্বাভাবিকভাবে প্রসববেদনা না উঠলে ওষুধের মাধ্যমে বা অন্যান্য উপায়ে কৃত্রিমভাবে প্রসব প্রক্রিয়া শুরু করা হয় (induced labour) বা সিজারিয়ান পদ্ধতিতে অপারেশনের মাধ্যমে প্রসবের পরামর্শ দেয়া হয় আপনার বা আপনার গর্ভের সন্তানের যদি কোন স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্ভাবনা দেখা দেয় অথবা আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা যদি সুনিয়ন্ত্রিত না থাকে সেক্ষেত্রে নির্ধারিত সময়েরও আগে সন্তান প্রসবের পরামর্শ দেয়া হতে পারে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের চিকিৎসা নিয়ে এখানে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়েছে বিস্তারিত জানতে পড়ুন আমাদের এই লেখায় সাধারণত সন্তান জন্মদানের পর গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সেরে যায় তবে যাদের এটি একবার হয় তাদের ভবিষ্যত গর্ভধারণের ক্ষেত্রে আবারও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় সেই সাথে মায়ের টাইপ ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকিও বাড়েসন্তান জন্মদানের ৬ থেকে ১৩ সপ্তাহ পরে রক্ত পরীক্ষা করে দেখুন আপনার ডায়াবেটিস আছে কি না যদি ডায়াবেটিস না থাকে তাহলেও এরপর থেকে বছরে অন্তত একবার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করুন রক্তে উচ্চ মাত্রায় সুগার থাকার কোনো লক্ষণ দেখা দিলে চেকআপের জন্য অপেক্ষা না করে দ্রুত ডাক্তার দেখানরক্তে উচ্চ মাত্রায় সুগার থাকার লক্ষণগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ঘন ঘন পিপাসা লাগা ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ হওয়া ও মুখ শুকিয়ে যাওয়াআপনার কোন লক্ষণ না থাকলেও নির্ধারিত সময়মতো পরীক্ষাগুলো করাতে হবে কারণ ডায়াবেটিসের অনেক রোগীর ক্ষেত্রেই তেমন কোন লক্ষণ দেখা দেয় নাডায়াবেটিস হওয়ার সম্ভাবনা কমানোর জন্য আপনার করণীয় সম্পর্কে ডাক্তার আপনাকে পরামর্শ দিবেন যেমন স্বাস্থ্যকর ওজন বজায় রাখা সু্ষম খাবার খাওয়া এবং নিয়মিত শরীরচর্চাকিছু কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যেসব মায়েদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস থাকে তাদের সন্তানদের পরবর্তীতে ডায়াবেটিস বা অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে আপনার যদি আগে কখনও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়ে থাকে এবং আপনি আবারও গর্ভধারণের পরিকল্পনা করেন তবে অবশ্যই আপনার ডায়াবেটিস পরীক্ষা করিয়ে নিন যদি আপনার ডায়াবেটিস থাকে তবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে সন্তানধারণের পূর্বপ্রস্তুতি নিয়ে রাখুন গর্ভধারণের আগে নিশ্চিত করুন যে আপনার ডায়াবেটিস পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে আছে যদি আপনি অপরিকল্পিতভাবে গর্ভধারণ করে থাকেন তবে ডাক্তারকে জানান যে আপনার এর আগে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ছিল এবং সে অনুযায়ী পরামর্শ নিন টাইপ ১ ডায়াবেটিস বিশেষ করে শিশুকিশোরদের মধ্যে বেশি দেখা যায় একারণে টাইপ ১ ডায়াবেটিসকে পূর্বে জুভেনাইল ডায়াবেটিস বা কৈশোরকালীন ডায়াবেটিস বলা হতো তবে যেকোনো বয়সেই কোনো ব্যক্তির এই রোগ হতে পারেটাইপ ১ ডায়াবেটিস বিশেষ করে শিশুকিশোরদের মধ্যে বেশি দেখা যায় একারণে টাইপ ১ ডায়াবেটিসকে পূর্বে জুভেনাইল ডায়াবেটিস বা কৈশোরকালীন ডায়াবেটিস বলা হতো তবে যেকোনো বয়সেই কোনো ব্যক্তির এই রোগ হতে পারেডায়াবেটিস অর্থ আমরা সচরাচর যেটিকে বুঝি তা মূলত টাইপ ২ ডায়াবেটিস ডায়াবেটিসে আক্রান্ত মোট রোগীর মাত্র ৫১০ শতাংশ টাইপ ১ ডায়াবেটিসে ভোগেনআমাদের শরীরে ইনসুলিন নামে একটি প্রকার হরমোন তৈরি হয় ইনসুলিন রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে টাইপ ১ ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের শরীরে এ হরমোন যথেষ্ট পরিমাণে তৈরি হয় না ফলে রক্তে সুগারের মাত্রা অতিরিক্ত বেড়ে যায়এখনো পর্যন্ত টাইপ ১ ডায়াবেটিস প্রতিরোধের কোনো উপায় আবিষ্কৃত হয়নি তবে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন ও নিয়মিত ডাক্তারের চেকআপের মাধ্যমে সহজেই রোগটি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভবউল্লেখ্য বয়স অথবা অতিরিক্ত ওজনের সাথে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের কোনো সম্পর্ক নেই এগুলোর সাথে টাইপ ২ ডায়াবেটিসের সংযোগ রয়েছে তাই অনেক ক্ষত্রে শুধুমাত্র সুস্থ জীবনধারা মেনে চলার মাধ্যমে টাইপ ২ ডায়াবেটিস প্রতিরোধ করা সম্ভব হলেও টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগীদের সুস্থ জীবনধারার পাশাপাশি ইনসুলিনও নিতে হয়পরিচ্ছেদসমূহ ১ টাইপ ১ ডায়াবেটিসের উপসর্গ ২ টাইপ ১ ডায়াবেটিসের পরীক্ষানিরীক্ষা ৩ টাইপ ১ ডায়াবেটিস রোগীদের যা জানা জরুরি ৩১ ডায়াবেটিস নরমাল কত পয়েন্ট ৩২ রক্তের সুগার কখন মাপবেন ৩৩ রক্তের সুগার পরিমাপ করার পদ্ধতি ৪ টাইপ ১ ডায়াবেটিসের চিকিৎসা ৪১ ইনসুলিন যেভাবে নিবেন ৪২ রক্তে সুগার কমে যাওয়ার লক্ষণ ও করণীয় ৫ নিয়মিত চেকআপ ও পরীক্ষানিরীক্ষা ৫১ প্রতি ৬ মাসের পরীক্ষা ৫২ বাৎসরিক পরীক্ষা ৬ চিকিৎসায় পরিবর্তন ৬১ হানিমুন পিরিয়ড ৬২ দৈহিক পরিবর্তন টাইপ ১ ডায়াবেটিসের উপসর্গগুলো তুলনামূলকভাবে দ্রুত দেখা দেয় বিশেষ করে শিশুদের ক্ষেত্রে এসব লক্ষণ খুব তাড়াতাড়ি প্রকাশ পায় লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— অতিরিক্ত তৃষ্ণা স্বাভাবিকের তুলনায় ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া বিশেষত রাতের বেলায় অতিরিক্ত ক্লান্তি অনুভব করা চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া বারবার ছত্রাকের সংক্রমণ (Thrush) দেখা দেওয়া দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া কাটাছেঁড়া বা অন্যান্য ক্ষত শুকাতে দেরি হওয়া নিঃশ্বাসের সময়ে ফলের মতো গন্ধ হওয়া ডায়াবেটিস শনাক্ত করার দুই ধরনের পরীক্ষা আছে—রক্ত পরীক্ষা ও প্রস্রাব পরীক্ষা এগুলোর মাধ্যমে প্রস্রাবে বা রক্তে কতটুকু সুগার আছে তা দেখা হয় ডায়াবেটিস শনাক্ত করার জন্য ডাক্তার আপনাকে এ দুটি পরীক্ষার যেকোনো একটি বা দুটি পরীক্ষাই করানোর পরামর্শ দিতে পারেনপরীক্ষায় ডায়াবেটিস ধরা পড়লে টাইপ ১ ডায়াবেটিসের অবস্থা মূল্যায়নের উদ্দেশ্যে ডাক্তার আপনাকে পরবর্তীতে আরও কিছু পরীক্ষা দিতে পারেন যেমন অটোঅ্যান্টিবডি পরীক্ষা অটোঅ্যান্টিবডি হলো আমাদের শরীরে তৈরি হওয়া এমন এক ধরনের অ্যান্টিবডি যা দেহের নিজস্ব কোষগুলোকেই আক্রমণ করে সাধারণত টাইপ ১ ডায়াবেটিস হলে রক্তে এ ধরনের বিশেষ অটোঅ্যান্টিবডি পাওয়া যায় কিটোন বডি পরীক্ষা এই পরীক্ষার মাধ্যমে প্রস্রাবে কিটোন বডি নামক রাসায়নিক পদার্থের উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয় শরীরে মজুত চর্বি বা ফ্যাট ভেঙ্গে কিটোন বডি তৈরি হয় প্রস্রাবে কিটোন বডির উপস্থিতি টাইপ ১ ডায়াবেটিস নির্দেশ করেটাইপ ১ ডায়াবেটিস শনাক্ত হলে তা নিয়ন্ত্রণে রাখার ব্যাপারে সচেতন হওয়া প্রয়োজন এজন্য নিয়মিত রক্তে সুগারের মাত্রা পরিমাপ করতে হবে এবং সেই অনুযায়ী ইনসুলিন নিতে হবে ডাক্তারের কাছ থেকে এ ব্যাপারে বিস্তারিত জেনে নিন ডায়াবেটিস নরমাল কত পয়েন্টডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীর রক্তে সুগারের স্বাভাবিক মাত্রা কত পয়েন্টে থাকা উচিত তা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিতে হবে আপনার ব্লাড সুগার লেভেল অন্যদের থেকে ভিন্ন হলেও চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই এক্ষেত্রে ডাক্তার পরামর্শ অনুযায়ী সুগারের লেভেল নিয়ন্ত্রিত থাকাই যথেষ্টগ্লুকোমিটারের সাহায্যে রক্তের সুগার পরিমাপ করলে সাধারণত নিচের পয়েন্টগুলোকে আদর্শ ধরা হয় পয়েন্ট বলতে মিলিমোল/লিটার (mmol/l) এককটি বোঝানো হয়েছে খাওয়ার আগে ৪ থেকে ৭ পয়েন্ট খাওয়ার ২ ঘন্টা পরে ৮ থেকে ৯ পয়েন্ট ঘুমানোর আগে ৬ থেকে ১০ পয়েন্টরক্তের সুগারের মাত্রা তথা ডায়াবেটিসের মাত্রা যদি রোগীর জন্য আদর্শ পয়েন্টের চেয়ে বেড়ে যায় তখন সেই অবস্থাকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলা হয় অন্যদিকে এই মাত্রা যদি রোগীর জন্য নির্ধারিত আদর্শ পয়েন্টের চেয়ে কমে যায় তখন তাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হয়আপনার রক্তের সুগারের পরিমাণ বিভিন্ন কারণে প্রভাবিত হতে পারে যেমন—মানসিক চাপ অসুস্থতা বা কোনো ইনফেকশন একেবারেই শারীরিক পরিশ্রম না করা অথবা অতিরিক্ত ব্যায়াম করা বিভিন্ন ধরনের ব্যথা মাসিক বা পিরিয়ড মদ পান করারক্তের সুগার কখন মাপবেনপ্রতিদিন নিচের সময়গুলোতে রক্তের সুগারের লেভেল মাপা উচিত—সকালের নাস্তার আগে খাওয়ার ২৩ ঘন্টা পরে ব্যায়াম করার পূর্বে মাঝখানে বিরতি চলাকালে ও ব্যায়ামের পরে ঘুমাতে যাওয়ার আগেএভাবে নিয়মিত ব্লাড সুগার পরিমাপ করলে সুগারের লেভেল কীভাবে খাবার ও ব্যায়ামের প্রভাবে ওঠানামা করে তা বোঝা যাবে এর ফলে ব্লাড সুগার একটি স্থিতিশীল মাত্রায় রেখে নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হবেতবে ডায়াবেটিস যদি একেবারেই অনিয়ন্ত্রিত থাকে অথবা রোগী অন্য কোনো অসুখে (যেমন জ্বর নিউমোনিয়া বা ডায়রিয়া) আক্রান্ত হয় তাহলে আরও ঘন ঘন ব্লাড সুগার পরিমাপ করতে হবে বিশেষত হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কোনো উপসর্গ দেখা গেলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব রক্তের সুগার পরিমাপ করে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবেরক্তের সুগার পরিমাপ করার পদ্ধতিএকটি গ্লুকোমিটার বা ডায়াবেটিস টেস্টিং কিটের সাহায্যে বাড়িতেই রক্তের সুগার কত পয়েন্ট তা নির্ণয় করা যায় এক্ষেত্রে একটি সূক্ষ্ম সুঁইয়ের মত যন্ত্রের সাহায্যে আঙুলের ডগায় খোঁচা দেয়া হয় রক্ত বেরিয়ে আসলে টেস্টিং স্ট্রিপে এক ফোঁটা রক্ত নিয়ে তা মিটারে ঢুকিয়ে সুগার পরীক্ষা করা হয়ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের জন্য নিয়মিত রক্তের সুগার পরিমাপ করা অত্যন্ত জরুরি নিয়মিত সুগারের লেভেল পর্যবেক্ষণে রাখলে ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ সহজ হবে ডায়াবেটিসের বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা এড়াতে রক্তের সুগার মাপার যন্ত্রটি সবসময় হাতের কাছে রাখা গুরুত্বপূর্ণবাসায় বসে ডায়াবেটিস মাপতে যা যা প্রয়োজন— গ্লুকোমিটার জীবাণুমুক্ত ছোট সুঁই বা ল্যানসেট সুঁই বসানোর প্লাস্টিকের কলম টেস্ট স্ট্রিপফার্মেসিতে গ্লুকোমিটার কেনার সময়ে এগুলো একসাথে কিনে নেওয়া যায়ঘরোয়া উপায়ে রক্তের সুগার মাপার ৭টি ধাপ এখানে তুলে ধরা হলো— প্রথমে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ভালো করে ধুয়ে শুকিয়ে নিতে হবে সাবানের পরিবর্তে অ্যালকোহল প্যাড বা হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়েও হাত জীবাণুমুক্ত করে নেওয়া যায় তবে সেক্ষেত্রে আঙ্গুল পুরোপুরি শুকানো পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে গ্লুকোমিটারের নির্ধারিত স্থানে একটি টেস্ট স্ট্রিপ প্রবেশ করাতে হবে গ্লুকোমিটারের মডেলভেদে স্ট্রিপও ভিন্ন হয় তাই নির্দিষ্ট মডেল অনুযায়ী সঠিক স্ট্রিপ বেছে নিতে হবে এছাড়া স্ট্রিপ নকল বা মেয়াদোত্তীর্ন কি না সে বিষয়েও খেয়াল রাখতে হবে প্লাস্টিকের কলমের ভেতরে একটি ল্যানসেট সংযুক্ত করে ল্যানসেটের ঢাকনা সরিয়ে ফেলতে হবে উল্লেখ্য প্রতিবার ডায়াবেটিস মাপার সময়ে নতুন সুঁই ব্যবহার করতে হবে কলমটি সহজে ও সঠিকভাবে ব্যবহারের উপায় জানতে গ্লুকোমিটারের মোড়কে বা প্যাকেটের ভেতরে থাকা লিফলেটের নির্দেশনা অনুসরণ করুন এবার কলমটি আঙুলের একপাশে ধরে সুঁই দিয়ে আঙ্গুলের অগ্রভাগে ছিদ্র করতে হবে কলমটি আঙুলের একপাশে ধরলে ব্যথা কম লাগবে প্রতিবার রক্তের সুগার মাপার সময়ে ভিন্ন ভিন্ন আঙ্গুল ব্যবহার করতে হবে স্বতঃস্ফূর্তভাবে বেরিয়ে আসা এক ফোঁটা রক্তই গ্লুকোমিটারে ডায়াবেটিস পরিমাপের জন্য যথেষ্ট এখন গ্লুকোমিটারে লাগানো টেস্ট স্ট্রিপে রক্তের ফোঁটা বসাতে হবে আঙুলটি এমনভাবে ধরতে হবে যেন রক্তের ফোঁটা টেস্ট স্ট্রিপের নির্ধারিত অংশকে পূর্ণ করে রক্তের পরিমাণ খুব কম হলে ভুল রিডিং আসতে পারে অথবা গ্লুকোমিটারের পর্দায় ERROR দেখাতে পারে কয়েক সেকেন্ডের মধ্যেই গ্লুকোমিটারের পর্দায় রক্তের সুগারে তথা ডায়াবেটিসের পয়েন্ট দেখা যাবে হিসাবটি সাধারণত mmol/l (মিলিমোল/লিটার) এককে দেখানো হয় তবে কিছু গ্লুকোমিটারের হিসাবটি mg/dL (মিলিগ্রাম/ডেসিলিটার) এককে দেখানো হতে পারে ইনসুলিন যেভাবে নিবেনসাতটি সহজ ধাপে আপনি নিজে নিজে ঘরে বসে ইনসুলিন ইনজেকশন নিতে পারেন ধাপগুলো হলো— হাত ভালোভাবে ধুয়ে শুকিয়ে নিন ইনজেকশনটি শরীরের কোন জায়গায় দিবেন তা ঠিক করুন ইনসুলিন ইনজেকশন নেওয়ার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত হল শরীরের চর্বিযুক্ত স্থান যেমন তলপেট (নাভির নিচের অংশ) উরু বা নিতম্বপ্রত্যেকবার ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় ইনজেকশন নেওয়া জরুরী আগে যেখানে ইনসুলিন নিয়েছেন তার থেকে থেকে অন্তত ১ সেন্টিমিটার বা আধা ইঞ্চি দূরে পরের ইনজেকশন দেওয়া উচিত একই জায়গায় বারবার ইনজেকশন দিলে ওই জায়গাটি শক্ত হয়ে ফুলে যেতে পারে যা পরবর্তীতে ইনসুলিন শোষণে এবং সঠিকভাবে কাজ করতে বাধা দিবে ইনসুলিন পেন এর বাইরের ও ভেতরের ক্যাপ খুলে এতে সুঁইটি লাগিয়ে নিন ডায়াল ঘুরিয়ে ২ ইউনিটে নিয়ে আসুন এরপর পেনটিকে সোজা করে ধরুনযতক্ষণ পর্যন্ত সুঁইয়ের মাথায় ইনসুলিন না দেখা যায় ততক্ষণ পেনের পেছনে থাকা প্লাঞ্জারে ধীরে ধীরে চাপ দিন এই কাজটিকে বলা হয় প্রাইমিং সুঁই ও ইনসুলিন ভায়াল বা কার্তুজের ভেতরে কোনো বাতাস থাকলে তা এই পদ্ধতিতে বের করা যায় ফলে ডোজ নিয়ন্ত্রণ সহজ হয় এবার ডায়াল ঘুরিয়ে ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ী নির্দিষ্ট ডোজটি বাছাই করুন যেখানে ইনজেকশনটি নিবেন সেই স্থান পরিষ্কার ও শুকনো আছে কি না তা নিশ্চিত করুন সমকোণে বা খাড়াভাবে (৯০ ডিগ্রী কোণে) সুঁইটি শরীরে প্রবেশ করান ইনজেকশন দেওয়ার আগে ত্বক আস্তে চিমটি দিয়ে উঠিয়ে নিতে পারেন যতক্ষণ পর্যন্ত ডায়ালটি ০ তে ফেরত না যায় ততক্ষণ প্লাঞ্জারে চাপ দিয়ে ধরে রাখুন সুঁইটি সরানোর আগে ইনসুলিন যেন শরীরে প্রবেশ করার যথেষ্ট সময় পায় সেজন্য ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনে নিন ত্বকে চিমটি দিয়ে রাখলে তা সরিয়ে নিন সুঁইটি সরিয়ে নিরাপদ স্থানে ফেলে দিনরক্তে সুগার কমে যাওয়ার লক্ষণ ও করণীয়রক্তে গ্লুকোজ তথা সুগারের পরিমাণ ন্যূনতম স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কমে গেলে তাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হয় ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের বিশেষ করে ইনসুলিন নিতে হয় এমন ডায়াবেটিস রোগীদের প্রায়ই হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারেহাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণহাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হতে পারে আপনার যদি বারবার সুগার কমে যাওয়ার ইতিহাস থাকে তাহলে আপনি নিজেই হয়তো নিজের লক্ষণগুলো খেয়াল করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হচ্ছে কি না তা বুঝতে পারবেন তবে সময়ের সাথে আপনার লক্ষণগুলোতে ভিন্নতা আসতে পারেরক্তে সুগার কমে যাওয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে কিছু শুরুর দিকেই দেখা দেয় সময়মতো চিকিৎসা শুরু না করলে খিঁচুনি ও জ্ঞান হারানোর মতো মারাত্মক কিছু অবস্থাও দেখা দিতে পারেশুরুর দিকের লক্ষণগুলো হলো— অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া ক্লান্ত অনুভব করা মাথা ঘুরানো ক্ষুধা লাগা ঠোঁটের চারিদিকে পিন বা সুঁই ফোটানোর মত অনুভূতি হওয়া শরীরে কাঁপুনি হওয়া বুক ধড়ফড় করা সহজেই বিরক্ত অশ্রুসিক্ত উত্তেজিত বা খামখেয়ালি হয়ে যাওয়া ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়াসুগার কমে গেলে ঘরোয়া চিকিৎসাআপনার রক্তের সুগার যদি ৪ পয়েন্টের নিচে নেমে যায় অথবা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে নিচের কাজগুলো করুন—ধাপ ১ চিনিযুক্ত খাবার খান বা পানীয় পান করুনএকটি ছোট গ্লাসে কোমল পানীয় অথবা ফলের রস নিয়ে খান বিকল্প হিসেবে ছোট এক মুঠ মিষ্টি বা চারপাঁচটি ডেক্সট্রোজ ট্যাবলেট খেতে পারেনধাপ ২ ১০ থেকে ১৫ মিনিট পর আপনার রক্তের সুগার পরিমাপ করুনযদি এটি ৪ পয়েন্ট বা এর উপরে থাকে এবং আপনি আগের তুলনায় ভালো অনুভব করেন তাহলে তৃতীয় ধাপে যানযদি রক্তের সুগার এখনো ৪ পয়েন্টের নিচে থাকে তাহলে আবার প্রথম ধাপে গিয়ে চিনিযুক্ত পানীয় বা খাবার খান এর ১০১৫ মিনিট পর আবার সুগার পরীক্ষা করুনধাপ ৩ যদি আপনার আহারের সময় হয়ে থাকে তাহলে শর্করাযুক্ত খাবারটি খান কিংবা শর্করাযুক্ত কোনো নাস্তা খান নাস্তাটি হতে পারে একটি টোস্ট কয়েকটি বিস্কুট অথবা এক গ্লাস দুধআপনি যদি ভালো অনুভব করেন অথবা হাতেগোনা কয়েকবার হাইপোগ্লাইসেমিয়ার উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে হাসপাতালে না গেলেও তেমন শঙ্কা নেই কিন্তু যদি বারবার হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে থাকে অথবা রক্তে সুগার কমে যাওয়ার পরও আপনার কোনো লক্ষণ দেখা না দেয় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবেহাইপোগ্লাইসেমিয়া সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের হাইপোগ্লাইসেমিয়া আর্টিকেলটি পড়ুনডায়াবেটিস রোগীর গাড়ী চালানোর ব্যাপারে বিশেষ সতর্কতাডায়াবেটিস রোগীর যদি পেশাগত কারণে কিংবা নিত্যদিনের যাতায়াতে গাড়ি (যেমন সিএনজি মোটরগাড়ি পিকআপ বাস ও ট্রাক) চালাতে হয় তাহলে নিচের ৩টি বিষয় নিশ্চিত করা উচিত— গাড়ী চালানোর পূর্বের ২ ঘন্টার মধ্যে ব্লাড সুগারের লেভেল পরিমাপ করা দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালালে ২ ঘন্টা পর পর ব্লাড সুগারের লেভেল পরিমাপ করা যাত্রা শুরু করার সময়ে চিনিযুক্ত হালকা নাস্তা এবং কলা বা আটার রুটির মতো শর্করা জাতীয় খাবার সাথে রাখাচলন্ত অবস্থায় যদি মনে হয় সুগারের মাত্রা কমে হাইপো হয়ে গিয়েছে তাহলে—নিরাপদ স্থানে গাড়ি থামিয়ে ফেলতে হবে চাবি সরিয়ে নিয়ে গাড়ি বন্ধ করে রাখতে হবে চালকের আসন থেকে সরে যেতে হবে ব্লাড সুগারের লেভেল মাপতে হবে যদি হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে স্বাভাবিক বোধ করার পরে অন্তত ৪৫ মিনিট পর্যন্ত গাড়ি চালানো যাবে না ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পরে নিয়মিত ডাক্তারের ফলোআপে থাকতে হবে কোনো প্রশ্ন থাকলে তা ডাক্তারের কাছ থেকে নিঃসংকোচে জেনে নিতে হবেডায়াবেটিসের চেকআপে এমন কিছু পরীক্ষা রয়েছে যেগুলো ৬ মাস পরপর করানোর প্রয়োজন হয় আবার কিছু পরীক্ষা আছে যেগুলো বছরে একবার করালেই হয়প্রতি ৬ মাসের পরীক্ষাএই পরীক্ষাগুলোর মধ্যে রয়েছে রক্ত ও প্রস্রাবের পরীক্ষা ডায়াবেটিস কতটুকু নিয়ন্ত্রণে আছে তা জানার জন্য এসব পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয়সাধারণত ৬ মাস পরপর এসব পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হলেও যাদের নতুন করে টাইপ ১ ডায়াবেটিস শনাক্ত হয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এসব পরীক্ষা আরও ঘন ঘন করাতে হতে পারে এসব পরীক্ষার মধ্যে রয়েছে— এইচবিএওয়ানসি পরীক্ষা (HbA1C Test) বিগত ২৩ মাসে ব্লাড সুগার লেভেলের নিয়ন্ত্রণ কেমন ছিল তা জানার জন্য পরীক্ষাটি করানো হয় কোলেস্টেরল (Cholesterol) পরীক্ষা রক্তে চর্বির পরিমাণ জানার জন্য এই পরীক্ষাটি করানো হয় কিডনির পরীক্ষা (Kidney Function Tests) কিডনি সঠিকভাবে কাজ করছে কি না দেখার জন্য এই পরীক্ষা করানো হয় ইউরিনারি অ্যালবুমিন (Urinary Albumin) প্রস্রাবে অ্যালবুমিন নামক প্রোটিনের পরিমাণ দেখার জন্য পরীক্ষাটি করানো হয়এছাড়া রোগীর ওজন ও রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে আছে কি না সেটাও পরীক্ষা করে দেখা হয় পরীক্ষার রিপোর্ট দেখানোর সুযোগে বাড়িতে গ্লুকোমিটারে মাপা সুগারের লেভেলের ব্যাপারেও ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিতে পারেনবাৎসরিক পরীক্ষাচোখ পরীক্ষাবছরে একবার চোখ পরীক্ষা করানো উচিত এই পরীক্ষায় চোখের পেছনের অংশের একটি ছবি নেয়া হবে এবং ডায়াবেটিসের কারণে চোখে কোনো পরিবর্তন হয়েছে কি না তা পরীক্ষা করে দেখা হবেএটি সাধারণ দৃষ্টিশক্তির পরীক্ষার চেয়ে আলাদা কারণ এই পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার চশমা প্রয়োজন কি না সেটি পরীক্ষা করা হয় নাপায়ের পাতার পরীক্ষাএক্ষেত্রে যে বিষয়গুলো লক্ষ্য করতে হবে সেগুলো হলো— পায়ের পাতা অবশ হয়ে আসছে কি না পায়ে নতুন করে কড়া পড়ছে কি না পায়ের কোনো অংশে নতুন করে ইনফেকশন বা ঘা হয়েছে কি নাএই সমস্যাগুলোর কোনোটি দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে টাইপ ১ ডায়াবেটিস সনাক্ত হলে রোগীকে সাধারণত নির্দিষ্ট সময়ে প্রতি বেলার খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় সেই সাথে নির্দিষ্ট সময়ে নির্দিষ্ট ডোজের ইনসুলিন নিতে হয়সময়ের সাথে কেউ কেউ ডায়াবেটিসের ওপর ভালো নিয়ন্ত্রণ নিয়ে আসতে পারে সেক্ষেত্রে নিজস্ব জীবনধারার সাথে মিল রেখে চিকিৎসায় কিছুটা পরিবর্তন আনা যেতে পারে যার ফলে রোগী নিজের সুবিধামতো সময়ে আহার এবং সেই অনুযায়ী ইনসুলিন নিতে পারে তবে চিকিৎসায় কোনো পরিবর্তন আনার পূর্বে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে নিতে হবেহানিমুন পিরিয়ড ডায়াবেটিস সনাক্ত হওয়ার বছরখানেক পর্যন্ত শরীরে কিছুটা ইনসুলিন তৈরি হতে পারে এই সময়কে হানিমুন পিরিয়ড বলা হয় এই সময়কাল পার হয়ে গেলে রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন হয়ে পড়তে পারে তাই ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে রাখতে সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেদৈহিক পরিবর্তনবয়স বাড়ার সাথে সাথে অথবা শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন আসার কারণে ডায়াবেটিসের চিকিৎসায় কিছু পরিবর্তন আসতে পারে ডেঙ্গু জ্বরে যারা আক্রান্ত হন তাদের প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজনের অবস্থা মারাত্মক হয় এভাবে শত শত মানুষ প্রতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তবে জ্বর হলে সেটা ডেঙ্গু কি না তা আগেভাগেই ধরে ফেলে সময়মতো চিকিৎসা নিলে ভয়াবহতা অনেকখানি কমিয়ে আনা যায়ডেঙ্গু জ্বরে যারা আক্রান্ত হন তাদের প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজনের অবস্থা মারাত্মক হয় এভাবে শত শত মানুষ প্রতি বছর ডেঙ্গুতে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুবরণ করেন তবে জ্বর হলে সেটা ডেঙ্গু কি না তা আগেভাগেই ধরে ফেলে সময়মতো চিকিৎসা নিলে ভয়াবহতা অনেকখানি কমিয়ে আনা যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হলে তেমন কোনো লক্ষণ প্রকাশ পায় না আর ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণ দেখা দিলেও সেগুলো সাধারণত তেমন গুরুতর হয় নাকখন লক্ষণ দেখা দেয়ডেঙ্গু জ্বর হলে সাধারণত মশা কামড়ানোর ৩–১৪ দিনের (গড়ে ৪–৭ দিনের) মধ্যে লক্ষণগুলো প্রকাশ পায় এক্ষেত্রে মূলত সাধারণ সর্দিজ্বর কিংবা পেট খারাপের মতো লক্ষণ দেখা দেয় এসময়ে একদিন হঠাৎ করে কাঁপুনি দিয়ে প্রচণ্ড জ্বর আসতে পারে শরীরের তাপমাত্রা প্রায় ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইটে পৌঁছে যেতে পারে আবার তাপমাত্রা এত বেশি না হলেও গা গরম লাগতে পারে অথবা শরীরে কাঁপুনি হতে পারেডেঙ্গুর সাধারণ লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— তীব্র জ্বর (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস) তীব্র মাথাব্যথা চোখের পেছনে ব্যথা পেশিতে ও গিরায় গিরায় ব্যথা বমি বমি ভাব বমি হওয়া শরীরের গ্রন্থি ফুলে যাওয়া যেমন বগলে কুঁচকিতে কিংবা গলায় হাত দিলে বিচির মতো ফোলা অনুভব করা গায়ে লাল লাল র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি ওঠাঅন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—খাবারে অরুচি পেট ব্যথাডেঙ্গু হলে একই সাথে প্রচণ্ড জ্বর ও গায়ে ব্যথা হয় বলে একে অনেকসময় হাড়ভাঙা জ্বর বলা হয়কতদিন থাকেডেঙ্গুর লক্ষণগুলো সাধারণত ২–৭ দিন স্থায়ী হয়[৫] বেশিরভাগ মানুষই ১ সপ্তাহ পরে সেরে উঠতে শুরু করে সেরে ওঠার সময়ে ২–৩ দিনের জন্য শরীরে আবার র‍্যাশ দেখা দিতে পারে ও চামড়া উঠতে পারে লক্ষণগুলো সেরে যাওয়ার পরেও কারও কারও কয়েক সপ্তাহ ধরে ক্লান্ত ও অসুস্থ লাগতে পারেশিশুদের ডেঙ্গু জ্বরের লক্ষণগুলো কী কীডেঙ্গু রোগের প্রধান লক্ষণ হলো জ্বর আসা এক্ষেত্রে শরীরের তাপমাত্রা প্রায় ১০২–১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত বাড়তে পারে তবে শিশুদের ক্ষেত্রে অনেক সময় জ্বর নাও আসতে পারে জ্বর ছাড়া আরও যেসব লক্ষণ দেখা যেতে পারে সেগুলো হলো— শরীরের শক্তি কমে যাওয়া অথবা দুর্বল হয়ে যাওয়া ঘুম ঘুম ভাব খিটখিটে হয়ে যাওয়া অথবা অল্পতেই চিৎকার কিংবা কান্নাকাটি করা গায়ে লাল র‍্যাশ ওঠা মাড়ি অথবা নাক থেকে রক্ত পড়া ত্বকের নিচে রক্তক্ষরণ হয়ে লাল লাল র‍্যাশ বা ছোপের মতো হওয়া ২৪ ঘন্টায় কমপক্ষে ৩ বার বমি হওয়া পানিশূন্যতা দেখা দেওয়াশিশুদের ডেঙ্গু হলে সেটি খুব দ্রুত মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে তাই বিশেষ করে এক বছরের কম বয়সী শিশুদের যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে ভর্তি করানো প্রয়োজনমারাত্মক ডেঙ্গুর লক্ষণ ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত প্রায় প্রতি ২০ জনের মধ্যে একজনের ক্ষেত্রে সিভিয়ার ডেঙ্গি বা মারাত্মক ডেঙ্গু রোগ হতে পারে[৬] সাধারণত লক্ষণ দেখা দেওয়ার ৩–৭ দিনের মধ্যে এমন গুরুতর অবস্থা দেখা যায় এই সময়ে সাধারণত জ্বর চলে যাওয়ার (তাপমাত্রা <১০০° ফারেনহাইট) ২৪–৪৮ ঘন্টার মধ্যে হঠাৎ করে কিছু মারাত্মক লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন— তীব্র পেট ব্যথা পেটে চাপ দিলে ব্যথা লাগা কিংবা পেট ফুলে যাওয়া ২৪ ঘন্টায় ৩ বার অথবা তার বেশি বমি হওয়া শরীরের ভেতরে কিংবা বাইরে রক্তপাত হওয়া এটি বোঝার উপায় হলো— নাক অথবা মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়া বমি অথবা পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া এক্ষেত্রে কালো পায়খানা হতে পারে ও বমির সাথে কফির দানার মতো রক্ত যেতে পারে গাঢ় রঙের প্রস্রাব হওয়া অথবা প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া মাসিকের সময়ে অস্বাভাবিকভাবে বেশি রক্তপাত হওয়া অথবা যোনিপথে রক্ত যাওয়া ত্বকে রক্তপাত হওয়ার কারণে লাল রঙের ছোপ ছোপ র‍্যাশ দেখা দেওয়া খুব ক্লান্ত অস্থির কিংবা খিটখিটে লাগাএসব লক্ষণ ছাড়াও আরও কিছু লক্ষণ রোগীর মুমূর্ষু অবস্থা নির্দেশ করে— রক্তচাপ কমে যাওয়া শ্বাসপ্রশ্বাসের গতি বেড়ে যাওয়া/দ্রুত শ্বাস নেওয়া পালস বা নাড়ির গতি দুর্বল কিন্তু দ্রুত হয়ে যাওয়া (মিনিটে ১০০ এর চেয়ে বেশি) শরীর ঠাণ্ডা ভেজা ভেজা ও ফ্যাকাশে হয়ে যাওয়া ঝিমুনি মানসিক বিভ্রান্তি খিঁচুনি হওয়া কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া পানিশূন্যতা হওয়া যেমন— প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া যেমন ৪–৬ ঘন্টা ধরে প্রস্রাব না হওয়া মুখ শুকিয়ে যাওয়া চোখ বসে যাওয়া/গর্তে/কোটরে চলে যাওয়া ছোটোদের ক্ষেত্রে মাথার তালু বসে যাওয়া এবং কান্না করলে চোখ দিয়ে খুব অল্প পানি পড়া কিংবা একেবারেই পানি না পড়া সিভিয়ার ডেঙ্গি হলে রক্তনালীর ভেতরে থাকা রক্ত থেকে পানি বেরিয়ে যাওয়ার ফলে মারাত্মক পানিশূন্যতা সৃষ্টি শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে পানি আসা শ্বাসকষ্ট গুরুতর রক্তপাত ও বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের কাজে সমস্যা হওয়ার ফলে রোগীর অবস্থা খুব সংকটাপন্ন হয়ে যেতে পারে এমনকি এসব মারাত্মক জটিলতা থেকে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে আগে কখনো ডেঙ্গু হয়ে থাকলে মারাত্মক ডেঙ্গু হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় সেই সাথে ছোটো শিশু ও গর্ভবতীদের এই জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি মারাত্মক ডেঙ্গুর লক্ষণ দেখা দেওয়ার পরেও জ্বর কমতে থাকার কারণে ডেঙ্গু সেরে যাচ্ছে ভেবে বাড়িতে বসে থাকবেন না জ্বর বাড়ুক অথবা কমুক—যাইই হোক না কেন মারাত্মক ডেঙ্গুর যেকোনো লক্ষণ দেখামাত্রই রোগীকে হাসপাতালে ভর্তি করাতে হবে সাধারণ ডেঙ্গু জ্বর আসার সাথে সাথেই হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হয় না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে বাসায় চিকিৎসা করলে এই রোগ পুরোপুরি সেরে যায় তবে মারাত্মক ডেঙ্গুসহ কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে রোগীকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়ার প্রয়োজন এক্ষেত্রে তেমন কোনো মারাত্মক লক্ষণ প্রকাশ না পেলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিতে দেরি করা যাবে না কেননা কিছু রোগী আগে থেকেই শারীরিকভাবে দুর্বল থাকেন ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হলে হঠাৎ করে খুব দ্রুত গতিতে তাদের শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটতে পারেএমন ব্যক্তিদের মধ্যে রয়েছে— গর্ভবতী নারী এক বছর অথবা এর কম বয়সী শিশু বৃদ্ধ বা বয়স্ক ব্যক্তি অতিরিক্ত ওজনের বা স্থূল ব্যক্তি কিছু বিশেষ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যেমন ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ হার্ট ফেইলিউর ও কিডনি ফেইলিউর দীর্ঘদিন ধরে রক্তের সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিএ ছাড়াও আপনি একা বসবাস করলে অথবা আপনার পক্ষে বাড়িতে বসে প্রয়োজনীয় স্বাস্থ্য সেবা পাওয়া সম্ভব নয় মনে হলে নিকটস্থ হাসপাতালে ভর্তি হতে পারেন এতে করে আপনার রোগের গতিবিধি পর্যবেক্ষণ করা যাবে যেকোনো সময়ে অবস্থার অবনতি হলে সেটি সমাধানে দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা নেওয়া সহজ হবে[৯]জ্বর সেরে যাওয়ার সময়টায় সাধারণত ডেঙ্গুর জটিলতা দেখা দেওয়া শুরু করে তাই এই সময়টায় রোগীর লক্ষণগুলো সতর্কতার সাথে পর্যবেক্ষণ করতে হবে যেকোনো সমস্যা হলে খুবই দ্রুততার সাথে তা সমাধানের ব্যবস্থা নিতে হবে ডেঙ্গু হয়েছে কি না সেটি নিশ্চিত হওয়ার এবং রোগীর স্বাস্থ্যের অবস্থা সম্পর্কে ধারণা পাওয়ার জন্য সাধারণত বেশ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয় সেগুলো হলো— এনএস১ অ্যান্টিজেন (NS1 Antigen) পরীক্ষাএটি একটি রক্ত পরীক্ষা যার সাহায্যে খুব দ্রুত (প্রায় ২০ মিনিটের মধ্যে) ফলাফল পাওয়া যায় ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হলে সাধারণত জ্বর আসার প্রথম দিন থেকেই এই পরীক্ষার ফলাফল পজিটিভ হয়তবে জ্বর আসার চার–পাঁচ দিন পর থেকে এই টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসে অর্থাৎ জ্বর আসার চার–পাঁচ দিন পরে এই টেস্ট করলে শরীরে আদৌ ডেঙ্গু ভাইরাস আছে কি না সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে নাবাংলাদেশে সরকারিবেসরকারি বিভিন্ন হাসপাতালে সরকারের নির্ধারিত প্রায় ৫০০ টাকা মূল্যে এই টেস্ট করানো যায় ডেঙ্গু ইমিউনোগ্লোবিউলিন (Dengue IgM/IgG) পরীক্ষাআইজিএম ও আইজিজি অ্যান্টিবডি টেস্ট এক প্রকার রক্ত পরীক্ষা এই পরীক্ষা দুটির সাহায্যে রোগী ডেঙ্গু আক্রান্ত কি না সেটা নির্ণয় করা যায়আইজিএম অ্যান্টিবডি টেস্ট সাধারণত জ্বর আসার পাঁচ দিন পর থেকেই করা যায় তবে জ্বর আসার প্রায় সাত দিনের দিকে এই পরীক্ষা সবচেয়ে ভালো ফলাফল দিতে পারে সাম্প্রতিক সময়ে ডেঙ্গু হলে এ পরীক্ষা পজিটিভ আসেঅন্যদিকে শরীরে আইজিজি অ্যান্টিবডি টেস্টের মাধ্যমে পূর্বে কেউ কখনো ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয়েছিল কি না সেটি নির্ণয় করা যায় এই টেস্টটির মূল্য প্রায় ৩০০–৫০০ টাকা সিবিসি (CBC) পরীক্ষাএই পরীক্ষার মাধ্যমে মূলত রক্তে লোহিত রক্ত কণিকা শ্বেত রক্ত কণিকা প্লাটিলেট ও হেমাটোক্রিটের পরিমাণ নির্ণয় করা হয় ডেঙ্গু হলে এসব রক্ত কণিকার পরিমাণ সাময়িকভাবে কমে যেতে পারেএ ছাড়া রক্ত থেকে পানি বেরিয়ে যেতে শুরু করলে হেমাটোক্রিট অনেক বেড়ে যায় তাই ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করেছে কি না সেটি নির্ধারণ করার একটি অন্যতম উপায় হলো হেমাটোক্রিটের পরিমাণ নির্ণয় করা এই টেস্টটির মূল্য প্রায় ১৫০–৪০০ টাকাএ ছাড়াও বিভিন্ন প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শে আরও কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে যেমন রক্তের ALT/SGPT ও AST/SGOT পরীক্ষা এবং প্রস্রাব পরীক্ষা ডেঙ্গুর জীবাণুকে নিষ্ক্রিয় করে দ্রুত ডেঙ্গু সারিয়ে ফেলার মতো নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা এখনো আবিষ্কৃত হয়নি তবে সাধারণত ঘরোয়া কিছু পরামর্শ মেনে চলার মাধ্যমেই ডেঙ্গুর বিভিন্ন লক্ষণ উপশম করা যায়বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই শরীরের নিজস্ব রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার মাধ্যমে ধীরে ধীরে এই ভাইরাস নিষ্ক্রিয় হয়ে যায় তবে মারাত্মক ডেঙ্গু এবং কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা শুরু করতে হয়সাধারণ ডেঙ্গু হলে নিচের বিষয়গুলো মেনে চললে তা রোগীর লক্ষণ উপশমে সাহায্য করতে পারে— তরল খাবার ডেঙ্গু হলে শরীরের রক্তনালী থেকে রক্তের জলীয় অংশ বাইরে বেরিয়ে যায় তাই এই রোগে শরীরে পানিশূন্যতা হওয়ার সম্ভাবনা অনেক বেশি পানিশূন্যতা থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত ব্যক্তির মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারেএই সমস্যা প্রতিরোধের জন্য শুরু থেকেই প্রচুর পরিমাণে তরল খাবার খেতে হবে যেমন পানি ডাবের পানি স্যুপ লেবুপানি দুধ ফলের রস ও খাবার স্যালাইন সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তির দৈনিক কমপক্ষে ৬–৮ গ্লাস পানি ও তরল খাবার খাওয়া প্রয়োজনপানির পাশাপাশি পানিতে থাকা গুরুত্বপূর্ণ ইলেক্ট্রোলাইট বা লবণের চাহিদা মেটাতে পানির পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে খাবার স্যালাইন পান করতে পারেন বিশ্রাম ডেঙ্গু রোগে শরীর বেশ দুর্বল হয়ে যায় এজন্য এই সময়ে যতটা সম্ভব বিশ্রামে থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় তাই কাজকর্ম থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করবেন আর নিয়মিত ঘরের কাজ করলে আপনি বিশ্রামে থেকে বাড়ির অন্য কোনো সদস্য অথবা বন্ধুর সহযোগিতা নিবেন সেই সাথে ডেঙ্গু ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করতে অবশ্যই শোয়ার সময়ে মশারি টানিয়ে রাখবেন ঔষধ ডেঙ্গুর কারণে সৃষ্ট ব্যথা ও জ্বর কমানোর একমাত্র নিরাপদ ঔষধ হলো প্যারাসিটামল জ্বর ও ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন শিশুদের ক্ষেত্রে বয়স অনুযায়ী উপযুক্ত ডোজে প্যারাসিটামল খাওয়াতে হবেপড়ুন শিশুদের জন্য প্যারাসিটামলএ ছাড়া পানিতে এক টুকরা কাপড় ভিজিয়ে রোগীর গা মুছিয়ে দিতে পারেন জ্বরের সময়ে এভাবে গা মুছিয়ে দিলে অনেকে আরাম পেতে পারেডেঙ্গু হলে প্যারাসিটামল ছাড়া অন্য যেকোনো ধরনের এনএসএআইডি জাতীয় ব্যথার ঔষধ (যেমন অ্যাসপিরিন ও আইবুপ্রোফেন) সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে কেননা এসব ঔষধ খেলে শরীরে রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বেড়ে যায় যা রোগীর জীবনকে হুমকির মুখে ফেলে দিতে পারেসাধারণত এই উপায়গুলো মেনে চললে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে ডেঙ্গুর লক্ষণ উপশম করা যায় তবে ডেঙ্গুর কোনো লক্ষণ অথবা রোগীর সার্বিক অবস্থা নিয়ে চিন্তিত হলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া ভালো প্রচলিত ধারণা ডেঙ্গু রোগের চিকিৎসায় পেঁপে পাতার রস গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে পেঁপে পাতার রস প্লাটিলেট বাড়াতে সাহায্য করে এভাবে এটি ডেঙ্গুর ফলে সৃষ্ট রক্তক্ষরণ সংক্রান্ত জটিলতা প্রতিরোধে সাহায্য করে বিজ্ঞান যা বলে কোনো রোগের চিকিৎসায় যেকোনো ধরনের ঔষধ ব্যবহারের আগে সেই ঔষধটিকে বেশ কয়েকটি ধাপের বৈজ্ঞানিক গবেষণার পথ পাড়ি দিতে হয় ডেঙ্গুর চিকিৎসায় পেঁপে পাতার রস নিয়ে এই পর্যন্ত বেশ কিছু গবেষণা হয়েছে তবে পেঁপে পাতার রসকে সরাসরি ডেঙ্গুর চিকিৎসায় ব্যবহার করার মতো যথেষ্ট প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি কিছু গবেষণায় পশুপাখি ও স্বল্প সংখ্যক ডেঙ্গু রোগীর ক্ষেত্রে পেঁপে পাতার সম্ভাব্য উপকারিতা দেখা গিয়েছে তবে এসব গবেষণায় ব্যবহৃত পেঁপে পাতা রস তৈরির কাঁচামাল প্রক্রিয়া ও আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ব্যাপক ভিন্নতা রয়েছে ঠিক কোন পরিমাণে কতদিন ধরে এবং কোন ধরনের গাছের পাতার রসে উপকার পাওয়া যেতে পারে সেই বিষয়ে এখনো অনেক গবেষণার প্রয়োজন রয়েছে তাই ডেঙ্গুর চিকিৎসায় পেঁপে পাতার ওপর নির্ভরশীল না হয়ে সঠিক পরামর্শ মেনে চলুন প্রয়োজন অনুযায়ী হাসপাতালে ভর্তি হোন ডেঙ্গু মূলত এডিস মশার মাধ্যমে ছড়ায় সাধারণত এই মশা ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত ব্যক্তিকে কামড়ালে সেটিও ডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত হয় পরবর্তীতে ভাইরাসবাহী মশা অপর কোনো সুস্থ ব্যক্তিকে কামড়ালে সেই ব্যক্তির রক্তেও ডেঙ্গুর জীবাণু প্রবেশ করেডেঙ্গু ভাইরাসে আক্রান্ত গর্ভবতী নারী থেকে তার গর্ভের শিশুতে এই ভাইরাস ছড়াতে পারে এক্ষেত্রে শিশু গর্ভে থাকা অবস্থাতে অথবা জন্মের সময়ে আক্রান্ত হতে পারে এই ভাইরাস গর্ভের শিশুর ওপর নানান ধরনের বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে যেমন নির্দিষ্ট সময়ের আগেই জন্মগ্রহণ করা স্বাভাবিকের তুলনায় কম ওজন নিয়ে জন্মানো এবং গর্ভাবস্থাতেই শিশুর মৃত্যু হওয়াজেনে রাখা ভালো ডেঙ্গু মারাত্মক আকার ধারণ করলে ভাইরাসগুলো রক্তের অণুচক্রিকা বা প্লাটিলেট ধ্বংস করতে পারে প্লাটিলেটের অভাব হলে শরীরের বিভিন্ন জায়গায় রক্তপাত শুরু হতে পারে এর পাশাপাশি ভাইরাসের কারণে রক্তনালী থেকে রক্তরস বা প্লাজমা বাইরে বেরিয়ে যায় ফলে শরীরে মোট রক্তের পরিমাণ কমে যায় এবং রক্ত ঘন হয়ে যায় সেই সাথে শরীরের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থায় খুব অস্বাভাবিক পরিবর্তন আসে ডেঙ্গু হলে মূলত এসব কারণে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে গুরুতর জটিলতা সৃষ্টি হয় ফলে খুব অল্প সময়েই রোগীর অবস্থার অবনতি হতে থাকে এই অবস্থায় অতি দ্রুত হাসপাতালে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন ডেঙ্গু প্রতিরোধের জন্য যেসব বিষয়ের ওপর গুরুত্ব দিতে হবে সেগুলো হলো—১ মশা নিধনমশার কামড়ের মাধ্যমে ডেঙ্গু ছড়ায় বলে মশা নিয়ন্ত্রণ করাই এই রোগ প্রতিরোধের প্রধান উপায় এজন্য—ডেঙ্গু রোগের বাহক এডিস মশা সাধারণত জমে থাকা পানিতে ডিম পারে সেখান থেকেই এই মশার বংশবৃদ্ধি হয় তাই বাড়ি অফিস কিংবা স্কুলের আশেপাশের ড্রেন ডোবা পুকুর ও জলাশয় নিয়মিত পরিষ্কার করতে হবে গাছের টব নারকেলের ছোবড়া টায়ার পরিত্যক্ত আসবাব কিংবা পানি জমতে পারে এমন যেকোনো পাত্র বাড়ির আশেপাশে ফেলে রাখা যাবে না বাড়ির আশেপাশে ব্যবহার্য কোনো পাত্রে (যেমন ফুলদানি অথবা গাছের টব) পানি জমলে সেটি অন্তত তিন দিন পর পর ভালোমতো ঘষে মেজে পরিষ্কার করতে হবে যাতে মশার ডিমগুলোও ধ্বংস হয়ে যায় পানি জমা করে রাখার পাত্র (যেমন পানির ট্যাংক বালতি ও ড্রাম) সবসময় ঢাকনা দিয়ে ঢেকে রাখতে হবে কিছুদিন পর পর এসব খালি করে পরিষ্কার করতে হবে এসব পাত্র খোলা থাকলে সেখানে মশা নিধনকারী ঔষধ স্প্রে করতে হবে নিয়মিত এয়ারকন্ডিশনারের ও ফ্রিজের জমে থাকা পানি পরিষ্কার করতে হবে কয়েকদিনের জন্য বাড়ির বাইরে গেলে কমোড অথবা প্যান ঢেকে রাখতে হবে সেই সাথে পানির বালতি খালি করে রাখতে হবে বাড়ি অফিস কিংবা স্কুলের আশেপাশের এলাকায় নিয়মিত এডিস মশা নিধনকারী ঔষধ ছিটিয়ে দিতে হবে শহুরে এলাকায় অনেক সময় সিটি কর্পোরেশনের পক্ষ থেকে নিয়মিত বিরতিতে মশার ঔষধ ছিটানো হয় এর পাশাপাশি ঘরের আশেপাশে নিজ উদ্যোগে মশার ঔষধ ছিটানোর ব্যবস্থা করা উচিত২ নিজেকে মশার কামড় থেকে সুরক্ষিত রাখুনআক্রান্ত মশার মাধ্যমে এ রোগ সুস্থ মানুষের মাঝে ছড়ায় তাই নিজেকে যথা সম্ভব মশার কামড় থেকে রক্ষা করতে হবে এজন্য—সম্ভব হলে বাড়ি অফিস অথবা স্কুলের জানালায় নেট বা জাল লাগিয়ে নিবেন এতে করে মশা ঘরের ভেতরে ঢুকতে পারবে না ঘরের দরজা বেশিক্ষণ খোলা রাখবেন না বাড়ির দেয়ালে মশা বিতাড়ক রাসায়নিক পদার্থ দিয়ে রঙ করে নিতে পারেন ত্বকে লাগানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের মশা নিরোধক ক্রিম বা রেপেলেন্ট ব্যবহার করতে পারেন বাইরে বের হওয়ার সময়ে কাপড় দিয়ে পুরো ত্বক ভালোভাবে ঢেকে বের হতে চেষ্টা করবেন এক্ষেত্রে লম্বা প্যান্ট ও লম্বা হাতের জামা পরতে পারেন রাত কিংবা দিন—যেকোনো বেলায় ঘুমানোর সময় মশারি টানিয়ে ঘুমাবেন ঘরের ভেতরে মশা নিধনের জন্য ইলেকট্রনিক ব্যাট ব্যবহার করতে পারেন ঘরের ভেতরে মশার উপদ্রব কমানোর জন্য মতো মশা বিতাড়ক কয়েল অ্যারোসল অথবা লিকুইড স্প্রে ব্যবহার করতে পারেন তবে কয়েল কিংবা স্প্রে কেনার সময় চেষ্টা করবেন স্মোক ফ্রি বা ধোঁয়া হয় না—এমন পণ্য কিনতে কেননা ঘরের ভেতরে এসবের ধোঁয়ার কারণে অনেকেরই শ্বাসকষ্ট হতে পারে তবে এসব পণ্যের কার্যকারিতা নিয়ে কিছুটা সন্দেহ থাকতে পারে তাই মশা নিধনের অন্যান্য পদ্ধতিগুলোর দিকে গুরুত্ব দেওয়া বেশি জরুরিআপনি ইতোমধ্যে ডেঙ্গু জ্বরে আক্রান্ত হয়ে থাকলে নিজে মশারি টানিয়ে বিশ্রাম নিবেন এবং ঘুমাবেন কেননা আপনার মাধ্যমে আবার অনেক নতুন মশা এই ভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে নতুন করে অন্যদের আক্রান্ত করতে পারে ফলে খুব দ্রুত ডেঙ্গু বিস্তার লাভ করতে পারে রান্নাঘরে ঢোকার আগেই কি আপনি বুঝে যাচ্ছেন কী রান্না হয়েছে মাছের গন্ধে কি আপনার পেট মোচড় দিয়ে উঠছে রান্নাঘরে ঢোকার আগেই কি আপনি বুঝে যাচ্ছেন কী রান্না হয়েছে মাছের গন্ধে কি আপনার পেট মোচড় দিয়ে উঠছে গর্ভধারণ করার পরে অনেক নারীর ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়ে পড়ে যেই গন্ধগুলো হয়তো আগে তেমন বোঝা যেত না কিংবা খেয়াল হতো না সেগুলোও নাকে এসে লাগেডাক্তারি ভাষায় একে হাইপারঅসমিয়া বলা হয়গর্ভধারণ করলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন ঘটে এবং বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা যায় ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়ে পড়াও এমনই একটি উপসর্গ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে নারীরা ঘ্রাণশক্তি তীব্র হয়ে ওঠার বিষয়টি লক্ষ করেনআপনি এসময়ে ঘ্রাণশক্তি তীব্র হয়ে ওঠার পাশাপাশি কখনো কখনো অদ্ভুত গন্ধ পাচ্ছেন বলে মনে হতে পারে আবার কখনো কখনো কোনো উৎস ছাড়াই নাকে গন্ধ লাগতে পারেঘ্রাণশক্তির এসব পরিবর্তন গর্ভাবস্থার পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে অনেকটাই কমে আসেআর সন্তান জন্মদানের পরে প্রায় একেবারেই চলে যায়ঘ্রাণশক্তি তীব্র হয়ে যাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় আপনার মুখের স্বাদেও পরিবর্তন আসতে পারে মুখের ভেতরে টক টক কিংবা তেতো লাগতে পারে আবার কোনো খাবারই সুস্বাদু লাগছে না—এমনও হতে পারেএ ছাড়া গর্ভাবস্থায় ঘ্রাণশক্তি তীব্র মনে হওয়ার সাথে বমি বমি ভাব বেড়ে যাওয়ার একটি সম্পর্ক থাকতে পারে গর্ভধারণের কারণে হওয়া বমি বমি ভাব এবং গর্ভবতী মায়েদের ঘ্রাণশক্তি বেড়ে গিয়েছে বলে মনে হওয়া—দুটোই গর্ভাবস্থার প্রথম সপ্তাহগুলোতে ঘটে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জিনিসের স্বাভাবিক গন্ধও মায়েদের কাছে তীব্র মনে হতে পারে গর্ভাবস্থায় নারীদের ঘ্রাণশক্তি আক্ষরিক অর্থেই তীব্র হয়ে যাওয়ার পক্ষে তেমন জোরালো প্রমাণ পাওয়া না গেলেও অনেকেই গর্ভাবস্থায় নিজেদের ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়েছে এমন অনুভব করেনঘ্রাণশক্তির এমন পরিবর্তনের পেছনে এখনো কোনো স্পষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি তবে গর্ভকালীন হরমোনগুলোর প্রভাবে এমন পরিবর্তন হতে পারেহরমোনগুলো একদিকে আপনার ঘ্রাণশক্তির তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু গন্ধ—যেগুলো হয়তো আগে নাকে তেমন লাগত না—সেগুলো হয়তো এখন সহজেই ধরতে পারবেন গর্ভধারণের আগে কখনোই সমস্যা হয়নি—এমন খাবারের কিংবা জিনিসের গন্ধেও গর্ভাবস্থায় নতুন করে বমি বমি লাগা শুরু হতে পারে তাই আপনার কোন ধরনের গন্ধে সমস্যা হয় সেটি খেয়াল করুন এরপর সেগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুনতীব্র ঘ্রাণের অনুভূতি মোকাবেলায় কিছু সহজ ও ঘরোয়া উপায় এখানে তুলে ধরা হয়েছে—১ সুগন্ধি সামগ্রী হাতের কাছে রাখাযেসব জিনিসের ঘ্রাণ আপনার ভালো লাগে সেসব জিনিস আশেপাশে রাখার চেষ্টা করুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে লেবুর খোসার সুগন্ধ কিংবা আদার গন্ধ বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করেআবার কারও কারও হয়তো পুদিনা পাতা কিংবা দারুচিনির গন্ধে বমি বমি ভাব কমে আসে বলে মনে হয় তাই এগুলো দিয়েও চেষ্টা করে দেখতে পারেন২ মনোযোগ সরিয়ে নেওয়ার জন্য হাতে কিছু রাখাঘ্রাণ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিলে অস্বস্তি কমতে পারে মনোযোগ সরানোর জন্য চুইং গাম চিবাতে পারেন কিংবা লজেন্স চুষতে পারেন এসময়ে অন্য কিছুর কথা ভাবার চেষ্টা করুন নিজের পছন্দের কোনো গান কিংবা কবিতার কথা ভাবতে পারেনএ ছাড়া ছোটোখাটো কোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন হয়তো আলমারির একটা তাক অনেকদিন ধরে গোছানো হচ্ছে না কিংবা টেবিলের ওপরে বইখাতা এলোমেলো হয়ে আছে এগুলো একটু একটু করে গোছানোর চেষ্টা করতে পারেন৩ ফ্যান ছেড়ে দেওয়া এবং জানালা খুলে দেওয়াআপনি যেখানে আছেন সেখানে বাতাস চলাচল করলে ঘ্রাণের তীব্রতা কমে আসতে পারে তাই কোনো কিছুর গন্ধে অস্বস্তি লাগা শুরু করলে ফ্যান ছেড়ে দিন ঘর থেকে গন্ধটা বের করে দিতে জানালা খুলে দিন৪ সাবান শ্যাম্পু ও সুগন্ধি পরিবর্তন করাঅনেক নারীর গর্ভাবস্থায় কিছু কিছু সাবান শ্যাম্পু্‌ সুগন্ধি এমনকি টুথপেস্টের গন্ধ খারাপ লাগে যে জিনিসে সমস্যা হচ্ছে সেটা এড়িয়ে চলুন বিকল্প হিসেবে যে পণ্যের ঘ্রাণে আপনার সমস্যা হয় না সেটি ব্যবহার করুন বাজারে এমন সাবান শ্যাম্পু ও ডিওডোরেন্ট পাওয়া যায় যাতে গন্ধ নেই সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন৫ রান্নার সময়ে সতর্কতাগর্ভবতী নারীদের যেসব জিনিসের গন্ধে বেশি সমস্যা হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো খাবার[১৩]খেয়াল করুন গর্ভাবস্থায় কোন খাবারগুলোর গন্ধ আপনার কাছে খারাপ লাগছে সেগুলো রান্না করা এবং খাওয়া এড়িয়ে চলতে পারেনতবে একটি বিষয়ে বিশেষভাবে লক্ষ রাখবেন—বেছে বেছে খাবার খাওয়ার কারণে নিজেকে যেন অল্প কয়েকটি খাবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে না ফেলেন এতে করে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে তাই চেষ্টা করবেন ঘ্রাণের সমস্যা হলেও সুষম ও বৈচিত্র্যময় খাবার খেতেএ ছাড়া রান্নার সময়ে জানালা খোলা রেখে ফ্যান (বৈদ্যুতিক পাখা) ব্যবহার করতে পারেন যাতে করে খাবারের গন্ধ বাতাস চলাচলের মাধ্যমে ঘর থেকে দ্রুত বের হয়ে যায় এই পরামর্শগুলো গন্ধে সংবেদনশীলতা সমাধানের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব ঠেকাতেও কার্যকর৬ গরম খাবার এড়িয়ে চলাগরম গরম খাবার থেকে সাধারণত ঘ্রাণ বেশি পাওয়া যায়[১৪] তাই গরম খাবার না খেয়ে কিছুক্ষণ ঠাণ্ডা করে খাবারটা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে খেতে পারেন এতে গন্ধ কম লাগতে পারে৭ কাছের মানুষদের সাহায্য নেওয়াআপনার যে ঘ্রাণে অস্বস্তি হয় সেটি আপনার আশেপাশের মানুষ নাও জানতে পারে তাদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলুন তাহলে প্রয়োজনে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারবেযেমন ময়লার গন্ধে যদি আপনার অসুবিধা হয় তাহলে তারা ময়লা ফেলার দায়িত্ব নিতে পারে কিংবা তারা যদি এমন কোনো সুগন্ধি ব্যবহার করে যাতে আপনার অসুবিধা হচ্ছে আপনি তাদের জানালে তারা হয়তো সেটা পাল্টে ফেলতে পারেন বাড়ির ময়লাগুলো যে পাত্রে জমা করা হয় সেটি খালি করতে পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ করতে পারেন৮ জামাকাপড় পরিচ্ছন্ন রাখাকাপড়চোপড় ময়লা হলে সেখান থেকে ঘ্রাণে অস্বস্তি হতে পারে[১৫] এমন হলে পরিষ্কার জামাকাপড় পড়ুন জামাকাপড় নিয়মিত ধুয়ে রাখতে কারও সাহায্য নিতে পারেন৯ মাস্ক ব্যবহারগন্ধযুক্ত কোনো স্থানে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন তাতে গন্ধ কিছুটা কম লাগতে পারে গর্ভাবস্থায় দাঁত ক্ষয় ও মাড়ির বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায় এই সংক্রান্ত জটিলতা এড়ানোর সহজ উপায় হলো মুখের পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা পাশাপাশি দাঁতের ডাক্তার বা ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণগর্ভাবস্থায় দাঁত ক্ষয় ও মাড়ির বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায় এই সংক্রান্ত জটিলতা এড়ানোর সহজ উপায় হলো মুখের পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা পাশাপাশি দাঁতের ডাক্তার বা ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ গর্ভাবস্থায় আপনি মুখের ভেতরে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করতে পারেন যেমন—আপনার মাড়ি ফুলে যাওয়া মাড়ি থেকে রক্ত পড়া দাঁত মাজার সময়ে থুতুর সাথে আপনি হালকা গোলাপি অথবা টকটকে লাল রক্ত খেয়াল করতে পারেন দাঁত ব্যথা হওয়া দাঁতে ছোটো ছোটো গর্ত হওয়া দাঁতে পাথর হওয়া দাঁত নড়বড়ে হয়ে যাওয়া এমনকি পড়ে যাওয়া গর্ভকালের প্রথম ট্রাইমেস্টার থেকেই কারও কারও মাড়ি ফুলে যেতে পারে এবং মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে তবে সাধারণত গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যার প্রকোপ বাড়ে তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে মাড়ি ফোলা ও রক্ত পড়ার ঘটনা সাধারণত সবচেয়ে বেড়ে যায়এসময় সঠিক চিকিৎসা না নিলে মাড়ি ও মুখের হাড়ের ইনফেকশন হতে পারে এর ফলে দাঁত পড়ে যেতে পারে এমনকি ইনফেকশন সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে গর্ভাবস্থায় মাড়ির সমস্যা হওয়ার পেছনে কিছু কারণ থেকে থাকে যেমন— ১ হরমোনের তারতম্য গর্ভকালে আপনার শরীরে কিছু হরমোনের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় এর ফলে শরীরে নানান ধরনের পরিবর্তন হয় এর মধ্যে অন্যতম হলো আপনার মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্যে পরিবর্তন আসা একারণে দাঁতের মাড়িতে প্রদাহ হতে পারে এবং মাড়ি ফুলে যেতে পারে এতে মাড়ি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং দাঁত ও মাড়ির নানান ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়২ খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন গর্ভকালে আপনার চিনিযুক্ত খাবার ও শর্করা খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে এর ফলে দাঁতে প্ল্যাক হওয়া দাঁত ক্ষয় ও ক্যাভিটি বা গর্ত তৈরির সম্ভাবনা বেড়ে যায়৩ গর্ভাবস্থায় বমির প্রতিক্রিয়া মর্নিং সিকনেস বা গর্ভাবস্থায় বমির সমস্যা হলে বমিতে থাকা এসিড দাঁতের ক্ষতি করতে পারে এর প্রভাবে আপনার দাঁত ও মাড়িতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে গবেষণায় গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের দাঁতের মাড়ির রোগের সাথে গর্ভের শিশুর অকাল প্রসব ও কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়ার যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছেতবে মায়ের দাঁত ও মাড়ির রোগ গর্ভের সন্তানকে কীভাবে প্রভাবিত করে সেই বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নিএ ছাড়া প্রিএক্লাম্পসিয়া নামক গর্ভকালীন মারাত্মক জটিলতার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার সাথেও গর্ভবতীর মাড়ির রোগের সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে তবে এই বিষয়েও গবেষণার পরিমাণ অপর্যাপ্ত সবমিলিয়ে আপনার মাড়ি অথবা দাঁতের রোগ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়উল্লেখ্য মাড়ির রোগের চিকিৎসা নেওয়া গর্ভাবস্থার উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাবের সাথে জড়িত নয় বরং গর্ভাবস্থায় মাড়ির রোগের চিকিৎসা নেওয়া আপনার মুখের সুস্বাস্থ্যকে সাহায্য করেযেসব মায়েরা দাঁত পড়া ও দাঁতের ক্যাভিটি বা গর্ত বেড়ে যাওয়ার পরেও সঠিক চিকিৎসা করায় না তাদের শিশুদের ছোটোবেলায় দাঁতে ক্যাভিটি হওয়ার সম্ভাবনা তিনগুণের বেশি বেড়ে যায় মাড়ির প্রদাহ কমানোর জন্য ডেন্টিস্ট আপনাকে মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক অথবা মাউথওয়াশ দিতে পারেন এসব অ্যান্টিবায়োটিক ও মাউথওয়াশ সাধারণত গর্ভবতী নারীদের জন্য নিরাপদ হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আপনার সন্তানসম্ভবা হওয়ার বিষয়টি ডাক্তারকে জানাবেন যেন তিনি আপনার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর ঔষধটি বেছে নিতে পারেনএসব চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি দাঁত ও মাড়ি খুব ভালোমতো পরিষ্কার করার জন্য দাঁতের স্কেলিং করানোর পরামর্শ দিতে পারেন গবেষণায় দেখা গিয়েছে এই প্রক্রিয়া গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ[৭]আপনার ডেন্টিস্টের কাছ থেকে দাঁত ও মাড়ির যত্ন নেওয়ার উপায় জেনে নিন নিচে ঘরোয়াভাবে দাঁত ও মাড়ির যত্ন নিয়ে দাঁত ও মাড়ির অসুখ প্রতিরোধের উপায়গুলো তুলে ধরা হয়েছে খাবারের ছোটো ছোটো টুকরা দাঁতের ফাঁকে জমে থেকে অপরিচ্ছন্নতা তৈরি করে যার প্রভাব আপনার দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যের ওপর পড়তে পারে তা ছাড়া গর্ভাবস্থায় অথবা এর আগেও আপনার দাঁত অথবা মাড়ির কোনো সমস্যা থাকতে পারে গর্ভধারণের ফলে এসব সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারেএসবের নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য আপনি কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন যেমন—১ প্রতিদিন দাঁত মাজুন দিনে দুই বার দুই মিনিট করে দাঁত মাজবেন টুথপেস্টের ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট বেছে নিতে ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ব্রাশ করার সময়ে দাঁতের সামনে ও পেছনে ভালোমতো ব্রাশ করবেন সেই সাথে জিহ্বা ব্রাশ করতে ভুলবেন না জিহ্বা পরিষ্কার করতে Tongue Scraper ব্যবহার করতে পারেন প্রয়োজনে কিভাবে ব্রাশ করলে জমে থাকা ময়লা দূর করা যায় তা আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিন২ দাঁতের মাঝে আটকে থাকা খাবার পরিষ্কার করুন দিনে অন্তত একবার ফ্লস ব্যবহার করে আপনার দাঁতের মাঝে জমে থাকা ছোটো ছোটো খাবারের টুকরা পরিষ্কার করে ফেলুন এতে করে দাঁতে ময়লা জমে প্ল্যাক বা পরত তৈরি হওয়া প্রতিরোধ করা যেতে পারে৩ নরম ব্রাশ ব্যবহার করুন দাঁত ব্রাশ করার জন্য সবচেয়ে ভালো হয় যদি ব্রাশের মাজার অংশটি ছোটো ও নরম বা সফট হয় এজন্য ব্রাশ কেনার সময়ে Soft লেখা আছে কি না দেখে নিতে পারেন ব্রাশটি ধরতে আরামদায়ক কি না সেদিকেও লক্ষ রাখুন৪ অ্যালকোহলমুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন মুখের পরিচ্ছন্নতায় মাউথওয়াশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে তবে খেয়াল রাখবেন গর্ভাবস্থায় যে মাউথওয়াশটি ব্যবহার করছেন তাতে যেন কোনো অ্যালকোহল না থাকে৫ লবণপানি দিয়ে কুলি করুন দিনে একবার লবণপানি দিয়ে কুলি করে নিলে তা আপনার মাড়ির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে এজন্য এক কাপ কুসুম গরম পানিতে এক চা চামচ লবণ দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে সেটি ব্যবহার করতে পারেন মুখ থেকে পানি ফেলে দেওয়ার আগে কয়েকবার ভালোমতো গড়গড়া করে নিন৬ চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় কমিয়ে দিন খাবারের সময়ের মাঝে ক্ষুধা দূর করার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন যেমন সবজি ফল অথবা টক দই সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন গর্ভাবস্থায় সাধারণত দৈনিক ২–৩ লিটার বা ৮–১২ গ্লাস পানি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এতে যথেষ্ট পরিমাণে লালা তৈরি হয়ে মুখকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করবেঅস্বাস্থ্যকর চিনিযুক্ত খাবার ও অ্যাসিডিক খাবার এড়িয়ে চলুন যেমন চিনি দেওয়া চাকফি ও কোমল পানীয় গর্ভকালে চিনিযুক্ত খাবারের প্রতি প্রায়ই দুর্বলতা কাজ করতে পারে তবে খেয়াল রাখতে হবে খুব ঘন ঘন যাতে এসব খাবার খাওয়া না হয় কেননা অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খেলে দাঁত ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়৭ ধূমপান থেকে বিরত থাকুন গর্ভাবস্থায় সাধারণভাবেই ধূমপান থেকে বিরত থাকা উচিত কেননা ধূমপান গর্ভের শিশুর মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এ ছাড়া ধূমপান আপনার মাড়ির রোগের জন্য আরও খারাপ হতে পারে এমনকি মুখ ও মাড়ির ক্যান্সার ঘটাতে পারে৮ বমির পরে পানি দিয়ে কুলি করুন অনেক মায়ের গর্ভকালে বমি হয় বমির সাথে পেটের অ্যাসিডও মুখে চলে আসে—যা কিনা আপনার দাঁতের ক্ষতি করতে পারে তাই প্রতিবার বমি হওয়ার সাথে সাথে পানি দিয়ে ভালো করে কুলি করে নিন এ ছাড়া বমি করার পর পরই দাঁত ব্রাশ না করে অন্তত এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন কেননা বমির পর পর দাঁত একটু দুর্বল থাকে সাথে সাথে ব্রাশ করলে দাঁতের ক্ষতি হতে পারেসাধারণ পানির পরিবর্তে পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলি করলে সেটা মুখে চলে আসা অ্যাসিডকে নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করতে পারে ঘরেই এই মিশ্রণ তৈরির সহজ উপায় হলো এক কাপ পানিতে এক চামচ বেকিং সোডা গুলিয়ে এই পানি দিয়ে ভালোভাবে কুলি করে নেওয়া এতে দাঁতের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে উপকার পেতে পারেনমুখের যত্ন নিয়ে আরও জানতে ভিডিওটি দেখতে পারেন—৯ অন্তত একবার দাঁতের চেকআপ করান গর্ভাবস্থায় সময়ে দাঁতের ডাক্তার দেখানো আপনার জন্য একটি অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা হবে বলে মনে হতে পারে মুখের ভেতর যন্ত্রপাতি ঢুকালে তা সন্তানকে কিভাবে প্রভাবিত করে—এ নিয়ে আপনার মনে সংশয় থাকতে পারে অথবা এমনও হতে পারে যে এসময়ে বমি বমি ভাব থাকার কারণে দাঁতের ডাক্তার দেখাতে আপনি অস্বস্তি বোধ করছেনএরকম সব জড়তা কাটিয়ে গর্ভকালে অন্তত একবার হলেও দাঁতের ডাক্তার দেখিয়ে নিন তিনি আপনার দাঁত ও মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে দিবেন যা আপনার মুখের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে ঘরে কিভাবে আপনি মুখের যত্ন নিবেন তাও ডাক্তারের কাছ থেকেই জেনে নিতে পারবেনবেশিরভাগ ডেন্টাল প্রসিডিওর এই সময়ে নিরাপদ বলে বিবেচিত তারপরও আপনি আপনার ডাক্তারকে অবশ্যই জানিয়ে নিবেন যে আপনি সন্তানসম্ভবা এতে করে তিনি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী পদ্ধতিটি বেছে নিতে পারবেনদাঁতে ব্যথা হলে যদি ঘরোয়া পরামর্শগুলো মেনে চলার পরেও ব্যথা না কমে তাহলে প্যারাসিটামল খেতে পারেন এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদতবে আপনার জন্য উপযুক্ত ডোজ সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে কিংবা ঔষধের বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন গর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের ঔষধ সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম এরপরেও ব্যথা না কমলে দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নিন তিনি গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ একটি উপযুক্ত ব্যথা কমানোর ঔষধ দিতে পারেনকখন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন নিয়মিত ডেন্টিস্টের কাছে চেকআপ করানো আপনার দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায় আপনাকে অনেক সাহায্য করবে সাধারণ অবস্থায় বছরে অন্তত দুইবার দাঁতের ডাক্তারের কাছে গিয়ে দাঁত ও মাড়ি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় গর্ভাবস্থায় আপনার যদি বিগত ছয় মাসের ভেতরে দাঁতের ডাক্তার দেখানো না হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত দাঁতের ডাক্তার দেখিয়ে নিন[৯] এ ছাড়াও নিচের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে একজন দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নিন— দাঁতে ব্যথা হলে মাড়ির কোনো রোগের লক্ষণ থাকলে যেমন— ঘন ঘন মাড়ি ফোলা অথবা মাড়ি থেকে ঘন ঘন রক্ত পড়া মাড়িতে ব্যথা কিংবা মাড়ি ধরলে বা চাপ দিলে ব্যথা হওয়া মাড়ি ক্ষয় হয়ে যাওয়া মুখে লাগাতার দুর্গন্ধ থাকা দাঁত নড়বড়ে হয়ে যাওয়া মুখে কোনো ধরনের ফোলা বা বাড়তি মাংস দেখা গেলে মুখের ভেতরটা অনুভূতিহীন লাগলে দাদ রোগ একটি পরিচিত চর্মরোগ এই ছোঁয়াচে রোগটি ছত্রাক বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারণে ঘটে মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের যেকোনো জায়গায় দাদ হতে পারে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভবদাদ রোগ একটি পরিচিত চর্মরোগ এই ছোঁয়াচে রোগটি ছত্রাক বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের কারণে ঘটে মাথা থেকে পা পর্যন্ত শরীরের যেকোনো জায়গায় দাদ হতে পারে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নিলে এই রোগ থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব দাদের প্রধান উপসর্গ হলো ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ এই র‍্যাশ দেখতে সাধারণত আংটির মতো গোল হয়ে থাকে রঙ হয় লালচে তবে রোগীর ত্বকের বর্ণভেদে এটি রূপালি দেখাতে পারে আবার আশেপাশের ত্বকের চেয়ে গাঢ় বর্ণও ধারণ করতে পারেছবি দাদ রোগের লক্ষণদাদ রোগে ত্বকের বর্ণ পরিবর্তনের পাশাপাশি র‍্যাশের উপরিভাগে ছোটো ছোটো আঁইশ থাকতে পারে এ ছাড়া আক্রান্ত স্থানে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে—ত্বক কিছুটা খসখসে বা শুকনো হয়ে যাওয়া স্থানটি ফুলে যাওয়া চুলকানি হওয়া আক্রান্ত ত্বকের ওপরে চুল অথবা লোম থাকলে সেগুলো পড়ে যাওয়া আমাদের শরীরের যেকোনো অংশে দাদ দেখা দিতে পারে যেমন কুঁচকি মাথার ত্বক হাত পা পায়ের পাতা এমনকি হাতপায়ের নখ[১]আক্রান্ত স্থানভেদে দাদের লক্ষণেও ভিন্নতা আসতে পারে যেমন র‍্যাশের আকারে ভিন্নতা থাকতে পারে দাদের র‍্যাশ আস্তে আস্তে বড় হয়ে ছড়িয়ে যেতে পারে আবার কখনো কখনো একাধিক র‍্যাশ দেখা দিতে পারেনিচে শরীরের বিশেষ কিছু স্থানের দাদ রোগ সম্পর্কে প্রয়োজনীয় তথ্য তুলে ধরা হয়েছে—মাথার ত্বকছবি মাথার ত্বকে দাদ রোগমাথার ত্বকে দাদ দেখা দিলে সাধারণত আক্রান্ত অংশের চুল পড়ে টাক সৃষ্টি হয় টাক পড়া অংশে লালচে গোলাকার ও ছোটো ছোটো আঁইশযুক্ত র‍্যাশ তৈরি হয় এতে চুলকানি থাকতে পারেইনফেকশন ছড়িয়ে পড়লে টাক পড়া অংশের পরিমাণ আরও বাড়তে পারে এবং মাথার ত্বকে দাদ রোগের একাধিক র‍্যাশ তৈরি হতে পারেমাথার ত্বকের দাদ রোগ প্রাপ্তবয়স্কদের তুলনায় শিশুদের মধ্যে বেশি দেখা যায়পা ও পায়ের আংগুলের ফাঁকেএক্ষেত্রে আক্রান্ত স্থানটি লাল হয়ে ফুলে ওঠে এবং সেখান থেকে চামড়া উঠে যেতে থাকে সেই সাথে পায়ের আঙ্গুলগুলোর ফাঁকে ফাঁকে চুলকানি হয় বিশেষ করে পায়ের সবচেয়ে ছোটো আঙুল দুটির মাঝখানের অংশে চুলকানি হয়ে থাকে[২]পায়ে দাদ হলে পায়ের পাতা ও গোড়ালিও আক্রান্ত হতে পারে এমনকি গুরতর ক্ষেত্রে পায়ের ত্বকে ফোস্কা পড়তে পারেছবি পা ও পায়ের আংগুলের ফাঁকে দাদ রোগকুঁচকিকুঁচকিতে দাদ হলে সেটি সাধারণত ঊরুর ভেতরের দিকের ভাঁজে লাল লাল র‍্যাশ হিসেবে দেখা যায় র‍্যাশে আঁইশ থাকে এবং চুলকানি হয়দাঁড়িগাল চিবুক ও গলার ওপরের অংশে এই ধরনের দাদ দেখা দেয় এটিও লাল লাল র‍্যাশ হিসেবে দেখা যায় যাতে আঁইশ থাকে এবং চুলকানি হয় দাঁড়িতে দাদ হলে অনেক সময় র‍্যাশের ওপরে চলটা পড়ে[৩] আবার ভেতরে পুঁজও জমতে পারে একই সাথে আক্রান্ত অংশের চুল পড়ে যেতে পারেযেসব ক্ষেত্রে ডাক্তারের কাছে যাওয়া বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ত্বকে অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ ব্যবহারের পরেও অবস্থার উন্নতি না হলে কোনো কারণে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে যেমন কেমোথেরাপি কিংবা স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ ব্যবহার ও ডায়াবেটিস মাথার ত্বকের দাদ হলে এক্ষেত্রে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ১–৩ মাস পর্যন্ত মুখে খাওয়ার ঔষধ ব্যবহার করতে হয় পাশাপাশি শ্যাম্পু ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হয়ে থাকে দাদ একটি সংক্রামক রোগ এটি ট্রাইকোফাইটন মাইক্রোস্পোরাম ও এপিডার্মোফাইটন প্রকারের ফাঙ্গাস জাতীয় জীবাণুর মাধ্যমে সংক্রামণ ঘটায় এটি মূলত তিনভাবে ছড়ায়—আক্রান্ত ব্যক্তি কিংবা তার ব্যবহার্য জিনিসের সংস্পর্শ থেকে যেমন চিরুনি তোয়ালে ও বিছানার চাদর দাদ আক্রান্ত প্রাণীর সংস্পর্শ থেকেযেমন কুকুর বিড়াল গরু ছাগল ও ঘোড়া দাদ রোগের জীবাণু আছে এমন পরিবেশ বিশেষ করে স্যাঁতস্যাঁতে স্থান থেকে দাদ রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ ব্যবহার করা হয় চিকিৎসা নির্ভর করে শরীরের কোন স্থানে ইনফেকশন হয়েছে এবং ইনফেকশন কতটা গুরুতর তার ওপরঔষধ ব্যবহারের পাশাপাশি নিজের শরীরের অন্য কোনো স্থানে কিংবা বাড়ির সদস্যদের মধ্যে দাদ রোগ ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে কিছু নিয়ম মেনে চলাও গুরুত্বপূর্ণদাদের ঔষধদাদ রোগের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ঔষধগুলো বিভিন্ন রূপে পাওয়া যায় যেমন ক্রিম জেল লোশন স্প্রে পাউডার ট্যাবলেট ও ক্যাপসুলশরীরের ত্বকে দাদ রোগ হলে সাধারণত মুখে খাওয়ার ঔষধ না দিয়ে ক্রিম জেল লোশন স্প্রে কিংবা পাউডার হিসেবে সরাসরি ত্বকে লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয় এমন ঔষধের মধ্যে রয়েছে ক্লট্রিমাজোল মাইকোনাজোল টার্বিনাফিন ও কিটোকোনাজল এগুলো সাধারণত ২–৪ সপ্তাহ একটানা ব্যবহার করতে হয়ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নির্দিষ্ট সময় ধরে ঔষধ ব্যবহার চালিয়ে যাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ এমনকি আপাতদৃষ্টিতে র‍্যাশ সেরে গিয়েছে মনে হলেও ঔষধ ব্যবহার করা বন্ধ করা ঠিক নয় সঠিক সময় পর্যন্ত চিকিৎসা না নিলে র‍্যাশ পুরোপুরি নাও সারতে পারে কিংবা ত্বকে পুনরায় দাদ হতে পারেবিশেষ সতর্কতা দাদ সারাতে স্টেরয়েড ব্যবহার করবেন না দাদ রোগের র‍্যাশ দেখা দিলে অনেকে স্টেরয়েড জাতীয় ক্রিম বা মলম ব্যবহার করে থাকেন এটি একেবারেই ঠিক নয় কারণ এসব ঔষধ চুলকানি ও ত্বকের লালচে ভাব কমাতে সাহায্য করলেও দাদ সৃষ্টিকারী জীবাণুকে মারতে পারে না শুধু তাই নয় এসব ক্রিম ত্বকের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকেও দুর্বল করে ফেলে ফলে দাদ শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে পারে এমনকি ইনফেকশন ত্বকের গভীরে ঢুকে গুরুতর নানান জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এ ছাড়া স্টেরয়েড মলম দাদের ধরনও পরিবর্তন করে ফেলতে পারে এর ফলে ডাক্তারের জন্য সঠিকভাবে দাদ নির্ণয় করা কঠিন হয়ে পড়ে তাই দাদের চিকিৎসায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এই ধরনের ক্রিম ব্যবহার করা যাবে নাদাদ রোগের ঘরোয়া চিকিৎসাযা করবেনযত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা শুরু করুন ত্বক সবসময় শুকনো ও পরিষ্কার রাখুন আক্রান্ত ত্বক স্পর্শ করলে সাথে সাথে হাত ধুয়ে ফেলুন দৈনন্দিন ব্যবহারের কাপড় (যেমন তোয়ালে ও বিছানার চাদর) নিয়মিত ফুটন্ত পানি দিয়ে ধুয়ে নিনযা করবেন না দাদ হয়েছে এমন কারও ব্যবহার্য জিনিস (যেমন তোয়ালে চিরুনি ও বিছানার চাদর) ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন আক্রান্ত ত্বক স্পর্শ করা অথবা চুলকানো থেকে বিরত থাকুন নাহলে দাদ শরীরের অন্যান্য স্থানে ছড়িয়ে যেতে পারে এমনকি চুলকানোর কারণে ত্বকে ভিন্ন আরেকটি জীবাণু আক্রমণ করে ইনফেকশন ঘটাতে পারে যা দাদের চিকিৎসাকে আরও জটিল করে তুলতে পারে দাদ রোগে যে কেউ আক্রান্ত হতে পারেন তবে নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে দাদ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে তাই দাদ রোগের ঝুঁকি কমাতে সেসব বিষয়ে সতর্ক থাকতে হয়আপনার শিশুর দাদ রোগ হলে তার ক্ষেত্রেও যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে দাদ হলেও শিশুকে স্কুল ডেকেয়ার কিংবা নার্সারিতে পাঠাতে পারবেন তবে শিক্ষক অথবা পরিচর্যাকারীকে তথ্যটি জানিয়ে রাখুন এতে অন্য শিশুদের সাথে সরাসরি সংস্পর্শ এড়িয়ে চলতে সুবিধা হবে এবং দাদ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধ করা যাবেনিচের তালিকায় দাদ রোগ প্রতিরোধের উপায়গুলো তুলে ধরা হয়েছে—১ অপরিষ্কার শরীরে থাকে জীবাণু আর অপরিচ্ছন্ন স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে দাদ রোগের জীবাণু থাকার সম্ভাবনা বেশি এজন্য—ত্বক সবসময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন ও শুষ্ক রাখুন হাতের এবং পায়ের নখ ছোটো ও পরিষ্কার রাখুন দিনে অন্তত একবার মোজা ও অন্তর্বাস পরিবর্তন করুন২ খুব আঁটসাঁট জুতা পরলে এবং অতিরিক্ত ঘাম হলে দাদ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় তাই এমন জুতো ব্যবহার করুন যা আপনার পায়ের চারপাশে অবাধে বাতাস চলাচল করতে দেয়৩ অন্য মানুষের ত্বকের সংস্পর্শে আসতে হয় এমন খেলাধুলা[৫][৬][৭] (যেমন কুস্তি হাডুডু ও বক্সিং) করলেও দাদ রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় তাই এমন খেলাধুলা করলে আপনার ম্যাচ কিংবা অনুশীলনের পর পরই গোসল করুন ইউনিফর্ম ও সব ধরনের ক্রীড়া সরঞ্জাম (যেমন হেলমেট) সবসময় পরিষ্কার রাখুন অন্যদের সাথে ক্রীড়া সরঞ্জাম ভাগাভাগি না করে নিজস্ব সরঞ্জাম ব্যবহার করতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়৪ স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে দাদ রোগের ঝুঁকি বেশি তাই জিম কিংবা চেঞ্জিং রুম ও পাবলিক গোসলখানা এর মতো স্থানে খালি পায়ে হাঁটা থেকে বিরত থাকা উচিত৫ পশুপাখির সরাসরি সংস্পর্শে আসলে দাদ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ে তাই প্রাণীর সংস্পর্শে বিশেষ করে পোষা প্রাণীর সাথে মেলামেশার ক্ষেত্রে সতর্কতা অবলম্বন করুনপ্রাণীর সাথে সরাসরি সংস্পর্শে আসার পরে সাবান ও ট্যাপের পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন আপনার পোষা প্রাণীর যদি দাদ হয়েছে বলে মনে হয়—যেমন প্রাণীর শরীরে যদি দাদ দেখতে পান অথবা শরীর থেকে ছোপ ছোপ করে পশম পড়ে যায়—তাহলে তাকে পশু ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান৬ দাদ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি ও পশুর সংস্পর্শের বিষয়ে সতর্ক থাকুনআক্রান্ত ব্যক্তির ব্যবহার্য জিনিস ব্যবহার করলেও দাদ সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়ে তাই দাদ আছে এমন কারও সাথে পোশাক তোয়ালে চাদর বা অন্যান্য ব্যক্তিগত জিনিস শেয়ার করা থেকে বিরত থাকুন দাদ রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির অথবা প্রাণীর সংস্পর্শে এসে থাকলে ত্বকে কোনো পরিবর্তন দেখা দিচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখুনবিশেষ তথ্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হলে দাদ রোগসহ বিভিন্ন ইনফেকশনে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়[৮] যেমন ডায়াবেটিস রোগী ও দীর্ঘদিন ধরে স্টেরয়েড নিচ্ছেন কিংবা কেমথেরাপি নিচ্ছেন এমন ব্যক্তি তাই এসব ক্ষেত্রে দাদ রোগ প্রতিরোধের উপায়গুলো মেনে চলা বিশেষভাবে জরুরি গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো আপনার পা কামড়াতে বা খিল ধরতে পারে এটি মূলত পায়ে হঠাৎ করে তীক্ষ্ণ ব্যথা হওয়ার একটি অনুভূতি অনেকে এই সমস্যাকে পায়ের রগে টান লাগা বলে থাকেনগর্ভাবস্থায় কখনো কখনো আপনার পা কামড়াতে বা খিল ধরতে পারে এটি মূলত পায়ে হঠাৎ করে তীক্ষ্ণ ব্যথা হওয়ার একটি অনুভূতি অনেকে এই সমস্যাকে পায়ের রগে টান লাগা বলে থাকেনগর্ভাবস্থায় পা কামড়ানো মায়েদের একটি পরিচিত সমস্যা এটি সাধারণত মায়ের অথবা গর্ভের শিশুর কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে না তবে পা কামড়ালে রাতে ঘুমাতে সমস্যা হতে পারে এবং দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে কিছু সহজ উপদেশ মেনে চললে আপনি পা কামড়ানোর সমস্যা থেকে অনেকটাই স্বস্তি পেতে পারেন বেশিরভাগ সময়ে গর্ভকালের পরের অর্ধেকে অর্থাৎ ২০তম সপ্তাহের পর থেকে পা কামড়ানো বা খিল ধরার সমস্যা হয়[১] বিশেষ করে গর্ভকালীন শেষ তিন মাসে এই সমস্যা হওয়া বেশ কমন[২] অনেকের ক্ষেত্রেই কেবল রাতে পা কামড়াতে দেখা যায় [৩] তবে দিন অথবা রাত—যেকোনো সময়েই পা কামড়াতে পারে ঘরোয়া চিকিৎসা পা কামড়ানো উপশমে নিচের উপদেশগুলো প্রয়োগ করে দেখতে পারেন—পায়ের ব্যায়ামযখন আপনার পায়ের রগে টান লাগা বা পা কামড়ানো শুরু হবে তখনই দাঁড়িয়ে যাবেন এরপর পায়ের পাতা দুটিকে কিছুটা ভেতরের দিকে নিবেন এরপর পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে উঁচু হতে চেষ্টা করবেন যেন আপনি উঁচুতে থাকা কোনো কিছুর নাগাল পাওয়ার চেষ্টা করছেন এভাবে পায়ের পেছনের পেশি টানটান করার চেষ্টা করবেন এতে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে ইউটিউবে Calf Stretches (Toe Raises) লিখে সার্চ করলে এমন ভিডিও দেখতে পাবেন সেগুলো দেখে দেখেও এই ব্যায়াম করতে পারেনপা কামড়ানো শুরু হওয়ার সাথে সাথে কিছুদূর হেঁটে অথবা পা ঝাঁকিয়ে এরপর পা উঁচু করলে এই অনুভূতি উপশম হতে পারে[৫] পায়ের আঙুলগুলো সজোরে ওপরের দিকে টানটান করলে অথবা পায়ের পেশি জোরে জোরে ঘষলে কামড়ানো উপশম হতে পারেগরম পানি দিয়ে গোসলকুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে স্বস্তি পেতে পারেন এ ছাড়া পায়ের পেছনে হাঁটুর ঠিক নিচের মাংসল অংশে হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে গরম সেঁক দিতে পারেন তবে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করার সময়ে সাবধান থাকবেন পানি সহনীয় তাপমাত্রায় আছে কি না এবং ব্যাগের মুখ ভালোভাবে আটকানো আছে কি না তা দেখে নিবেন নির্দিষ্ট সময় পরপর ব্যাগ উল্টেপাল্টে দিবেনবরফের সেঁকপায়ে আলতোভাবে ঘষে ঘষে বরফ লাগাতে পারেনঔষধগর্ভাবস্থায় পা কামড়ানোর জন্য ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ভিটামিন বি ভিটামিন সি ও ভিটামিন ডি এর মতো বিভিন্ন ঔষধ নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে তবে সেগুলোর কার্যকারিতা এবং মা ও শিশুর ওপর এসবের প্রভাব গবেষণা থেকে পুরোপুরি পরিষ্কার নয়[৬] তাই ঘরোয়া উপদেশ মেনে চলার পরেও কোনো উন্নতি না হলে নিজে নিজে ঔষধ সেবন না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ব্যায়াম পা কামড়ানো ঠেকাতে পায়ের কিছু ব্যায়াম করে দেখতে পারেন এসব ব্যায়াম পায়ের পেশির ওপর কাজ করে এবং ব্যথা ও খিঁচ ধরা কমাতে সাহায্য করেব্যায়াম ১ দেয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড়ান এমনভাবে দাঁড়াবেন যেন দুই পা একত্র থাকে আর পা দেয়াল থেকে প্রায় ২ ফুট দূরে থাকে খেয়াল রাখবেন যেন আপনি সোজা হয়ে দাঁড়ালে আপনার দুই পা মেঝেতে সমান হয়ে থাকে আর দুই হাত সোজা করলে যেন হাতদুটো দেয়ালকে স্পর্শ করে এবার শরীর সোজা রেখে অর্থাৎ হাঁটু ও কোমর কোনোদিকে ভাঁজ না করে দেয়ালের দিকে সামান্য ঝুঁকে যান সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে হাতের তালু দিয়ে দেয়ালে চাপ দিন যেন মনে হয় আপনি দেয়ালকে ধাক্কা দিচ্ছেন এই অবস্থায় দেখবেন যে আপনার পায়ের পেছনের পেশিগুলোতে টান লাগছে ২০ সেকেন্ড ধরে এই অবস্থানে থাকুন এরপর সোজা হয়ে দাঁড়ান আবারও প্রথম থেকে ব্যায়াম করুন এভাবে পরপর মোট তিনবার ১ থেকে ৩ নম্বর ধাপ অনুসরণ করুন এভাবে দিনে চারবার করে এক সপ্তাহ ব্যায়াম করবেন এরপর থেকে দিনে দুইবার করে ব্যায়াম করা চালিয়ে যাবেন[৭]ব্যায়াম ২ পায়ের গোড়ালির ব্যায়ামআপনার গোড়ালির জয়েন্ট ভাঁজ করে পায়ের পাতা একবার নিজের বা ওপরের দিকে ওঠান আরেকবার টানটান করে দ্রুত নিচের দিকে নামান এভাবে জোরে জোরে মোট ৩০ বার করবেন ডান পায়ের পাতা বৃত্তাকারে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার মতো করে ঘুরান একবার ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘুরে সেদিকে অর্থাৎ ডান দিকে ৮ বার ঘোরাবেন এরপর ঘড়ির কাঁটা যেভাবে ঘুরে তার বিপরীত দিকে আরও ৮ বার ঘোরাবেন এভাবে মোট ১৬ বার ঘুরাতে হবে একই নিয়মে বাম পায়ের ব্যায়াম করুনঅন্যান্য উপায়পা কামড়ানো প্রতিরোধে ব্যায়ামের পাশাপাশি যেসব উপায় অবলম্বন করতে পারেন—১ পর্যাপ্ত পানি পান করা পর্যাপ্ত পানি পান করার মাধ্যমে পা কামড়ানো উপশম করা যেতে পারে[৮] একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে[৯] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটাই অনুসরণ করবেন২ আরামদায়ক জুতা পরা পায়ের গোড়ালিকে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক জুতা বেছে নিতে পারেন৩ শরীর সচল রাখা নিয়মিত শরীর সচল রাখার মাধ্যমে পায়ে খিঁচ ধরার সম্ভাবনা কমানো যেতে পারে নিয়মিত হাঁটার চেষ্টা করবেন হাঁটার পরিবর্তে আপনার জন্য সুবিধাজনক কয়েকটি ব্যায়াম বেছে নিতে পারেন এ ছাড়া একই অবস্থানে অনেকক্ষণ বসে অথবা দাঁড়িয়ে থাকা এড়িয়ে চলবেন কেউ কেউ বসার সময়ে পায়ের ওপরে পা তুলে বসা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন৪ কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়া সারাদিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিয়ে নিবেন একটানা অনেকক্ষণ কাজ করা এবং একটানা শুয়ে থাকা—দুটোই এড়িয়ে চলবেন যখন বসে সময় পার করতে হবে চেষ্টা করবেন পা দুটো উঁচু অবস্থানে রাখতে এজন্য একটা টুলের ওপরে পা রাখতে পারেন এ ছাড়া বসে বিশ্রাম নিতে নিতে খেতে খেতে অথবা টিভি দেখতে দেখতে পায়ের আঙুলগুলো নাড়াচাড়া করবেন এবং পায়ের পাতা একটু ঘুরিয়েফিরিয়ে নিবেন৫ সুষম খাবার খাওয়া আপনার খাবারে যেন প্রয়োজনীয় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন সুষম খাবার তালিকা মেনে চলার মাধ্যমে আয়রন ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ও বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব প্রতিরোধ করা যাবে যদি ব্যথা তীব্র হতে থাকে অথবা একটানা ব্যথা হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে তা ছাড়া পায়ে ব্যথার সাথে যদি ব্যাথার জায়গা গরম হয়ে যায় ফুলে যায় অথবা লালচে হয়ে যায় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি এটি ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস নামক মারাত্মক রোগের লক্ষণ হতে পারেডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস হলে পায়ের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধে এই জমাট বাঁধা রক্ত পায়ের রক্তনালী থেকে ছুটে রক্তের সাথে শরীরের অন্যান্য অংশের রক্তনালীতে যেয়ে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে ফুসফুসে এমন হলে শ্বাসপ্রশ্বাসে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে এমনকি রোগীর মৃত্যু হতে পারে এটি বিরল রোগ হলেও গর্ভাবস্থায় এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি তাই এই রোগের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন গর্ভাবস্থায় কী কারণে পায়ে এই ধরনের অনুভূতি হয় তা এখনো সুনিশ্চিতভাবে জানা যায়নিতবে এর পেছনে নিচের কারণগুলোর ভূমিকা থাকতে পারে—পায়ে বিশেষ কিছু এসিড (যেমন ল্যাকটিক এসিড) জমার কারণে পায়ের পেশি নিজে নিজে সংকুচিত হয়ে পা কামড়াতে পারে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু লবণের পরিমাণ ওঠানামা করলে পায়ে আপনাআপনি সংকোচন হয়ে পা কামড়াতে পারে গর্ভের শিশুর বাড়তি ওজন বহন করার ফলে পায়ে চাপ পড়ার কারণে পা কামড়াতে পারে গর্ভাবস্থায় সারা শরীরের পাশাপাশি পায়ের রক্ত সরবরাহে পরিবর্তন আসে একারণেও পা কামড়াতে পারে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ক্লান্তি থেকে পায়ে খিল ধরতে পারে গর্ভকালীন সময়ে শরীরে কিছু হরমোনের মাত্রা অনেক বেশি থাকে হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে পা কামড়ানোও এমন একটি লক্ষণ হতে পারে খাবার তালিকায় ফসফরাসযুক্ত খাবার বেশি থাকলে এবং ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত খাবার কম থাকলে এমন হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে পায়ের গভীরে থাকা শিরায় রক্ত জমার কারণে পা ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি পায়ে ব্যথা ও কামড়ানোর মতো অনুভূতি হতে পারে যেমন ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস এসব লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি গর্ভাবস্থায় শরীর কিছুটা ফুলে যাওয়া বেশ স্বাভাবিক বিশেষ করে পা পায়ের গোড়ালি পায়ের পাতা ও আঙুল এভাবে ফুলে যেতে দেখা যায় সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই ধরনের সমস্যা বেড়ে যায় এই ঘটনাকে অনেকে সচরাচর পানি আসা বলে থাকেগর্ভাবস্থায় শরীর কিছুটা ফুলে যাওয়া বেশ স্বাভাবিক বিশেষ করে পা পায়ের গোড়ালি পায়ের পাতা ও আঙুল এভাবে ফুলে যেতে দেখা যায় সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই ধরনের সমস্যা বেড়ে যায় এই ঘটনাকে অনেকে সচরাচর পানি আসা বলে থাকেএমন ফুলে যাওয়ার সমস্যা ধীরে ধীরে দেখা দিলে সেটি সাধারণত মা কিংবা গর্ভের বাচ্চার জন্য তেমন ক্ষতিকর হয় না তবে এটি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেকিন্তু শরীর হঠাৎ করে ফুলে যাওয়া শঙ্কার কারণ এটি কখনো কখনো প্রিএক্লাম্পসিয়া নামক গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ জনিত জটিলতার লক্ষণ হতে পারেনিচের পাঁচটি লক্ষণের যেকোনোটি দেখা দিলে গর্ভবতী মাকে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে— হঠাৎ করেই মুখ হাত অথবা পা ফুলে যাওয়া তীব্র মাথাব্যথা হওয়া দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে যাওয়া অথবা চোখে আলোর ঝলকানির মতো কিছু দেখা বুকের পাঁজরের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথা হওয়া ওপরের যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়া এগুলো প্রিএক্লাম্পসিয়া এর লক্ষণ হতে পারে সেক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে গর্ভাবস্থায় শরীর সাধারণ অবস্থার তুলনায় বেশি পানি ধরে রাখে তাই শরীর ফুলে যায়সারাদিন ধরে এই বাড়তি পানি শরীরের নিচের অংশে জমা হতে থাকে বিশেষ করে আবহাওয়া উষ্ণ থাকলে কিংবা গর্ভবতী নারী অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকলে এমন হতে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় মায়ের জরায়ু বড় হতে থাকে এই বাড়ন্ত জরায়ুর চাপ পায়ের রক্ত চলাচলে প্রভাব ফেলতে পারে একারণে পা পায়ের পাতা ও পায়ের গোড়ালিতে পানি জমে সেগুলো ফুলে যায়উল্লেখ্য গর্ভাবস্থায় হাত অথবা মুখ অনেক বেশি ফুলে যাওয়া আশংকাজনক এটি গর্ভাবস্থার বিপদ চিহ্নগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি চিহ্ন এই ধরনের ফোলা গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক পানি আসার ফোলা থেকে ভিন্ন হাত ও মুখ আশংকাজনকভাবে ফুলে যাওয়ার লক্ষণগুলো হলো— হাত এতটাই ফুলে যাওয়া যে আঙুল ভাঁজ করতে কিংবা নিজের আংটি পরে থাকতে সমস্যা মুখ এতটাই ফুলে যাওয়া যে চোখ পুরোপুরি খুলতে সমস্যা হয় মুখ ও ঠোঁট ফুলে আছে কিংবা অবশ হয়ে আছে বলে মনে হওয়া দীর্ঘক্ষণ একটানা দাঁড়িয়ে থাকা থেকে বিরত থাকুন আরামদায়ক জুতামোজা পরুন পা ফুলে গেলে চাপ লাগতে পারে এমন ডিজাইনের জুতা এড়িয়ে চলুন বিশ্রাম নেওয়ার সময়ে যথাসম্ভব পায়ের পাতা ওপরের দিকে রাখার চেষ্টা করুন প্রয়োজনে বিশ্রামের সময়ে পায়ের নিচে বালিশ দিতে পারেন প্রচুর পানি পান করুন এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে সাহায্য করবে নিয়মিত ব্যায়াম করুন দিনের বেলা নিয়মিত হাঁটার অথবা পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম করার চেষ্টা করুনপায়ের গোড়ালির ব্যায়ামবসে কিংবা দাঁড়িয়ে—যেকোনো অবস্থাতেই পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম করা যায় এই ব্যায়াম করলে তিনটি বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়—পায়ের রক্ত চলাচলকে উন্নত করে পায়ের গোড়ালি ফুলে যাওয়ার সমস্যা কমায় কাফ মাসল এ টান লাগা বা খিঁচ ধরা প্রতিরোধ করে কাফ মাসল হলো পায়ের পেছনের দিকে হাঁটুর নিচের অংশে থাকা পেশিযেভাবে ব্যায়াম করবেন— পাইলস একটি অতি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা এটি অর্শ রোগ নামেও পরিচিত অনেকেই এই সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগলেও এ ব্যাপারে পরামর্শ চাইতে বা ডাক্তার দেখাতে সংকোচ বোধ করেন ক্ষেত্রবিশেষে পাইলস এর সঠিক চিকিৎসার বদলে হোমিওপ্যাথি কবিরাজি ঔষধ ও অন্যান্য টোটকা গ্রহণ করেন এসব কারণে পাইলস ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করে তাই পাইলস বা অর্শ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এ সম্বন্ধে সচেতন হওয়া জরুরিপাইলস একটি অতি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা এটি অর্শ রোগ নামেও পরিচিত অনেকেই এই সমস্যায় দীর্ঘদিন ভুগলেও এ ব্যাপারে পরামর্শ চাইতে বা ডাক্তার দেখাতে সংকোচ বোধ করেন ক্ষেত্রবিশেষে পাইলস এর সঠিক চিকিৎসার বদলে হোমিওপ্যাথি কবিরাজি ঔষধ ও অন্যান্য টোটকা গ্রহণ করেন এসব কারণে পাইলস ক্রমশ জটিল আকার ধারণ করে তাই পাইলস বা অর্শ রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে এ সম্বন্ধে সচেতন হওয়া জরুরিপড়ুন কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঘরোয়া উপায় পায়ুপথ বা পায়খানার রাস্তার মুখ যদি কোনো কারণে ফুলে যায় এবং সেখান থেকে রক্ত পড়ে কিংবা পায়খানার রাস্তায় যদি গোটার মত হয় তখন একে বলা হয় পাইলস চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম হেমোরয়েড জটিল আকার ধারণ করার আগে অপারেশন ছাড়া অর্শ রোগের চিকিৎসা সম্ভব পাইলস বা অর্শ রোগের অন্যতম চারটি লক্ষণ নিচে তুলে ধরা হলো এসব লক্ষণ দেখা দিলে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি১ পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়াপাইলস হলে পায়খানার সাথে উজ্জ্বল লাল বর্ণের অর্থাৎ তাজা রক্ত যেতে পারে সাধারণত পায়খানার পরে টয়লেট পেপার ব্যবহার করলে সেখানে রক্তের ফোটা লেগে থাকতে পারে অথবা কমোডে বা প্যানের গায়ে টকটকে লাল রক্তের ছোপ দেখা যেতে পারে পাইলস হলে পায়ুপথের মুখে থাকা অ্যানাল কুশনগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হয় এই রক্ত বেরিয়ে গিয়ে জমাট বাধার সুযোগ পায় না এ কারণে এক্ষেত্রে তাজা লাল রঙের রক্ত দেখা যায়কিন্তু যদি কোনো কারণে পায়খানার সাথে গাঢ় খয়েরী রঙের রক্ত যায় বা আলকাতরার মতো কালো ও নরম পায়খানা হয় তবে তা সাধারণত পাইলস এর কারণে নয় পরিপাকতন্ত্রের কোনো অংশে রক্তপাতের কারণে পায়খানার সাথে এমন গাঢ় রক্ত যেতে পারে তাই এমনটা হলে রক্তপাতের কারণ জানার জন্য দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে২ পায়ুপথের মুখের অংশগুলো বেরিয়ে আসাপাইল হলে সাধারণত মলত্যাগের পরে অ্যানাল কুশনগুলো নরম গোটার মতো বের হয়ে আসে এগুলো কিছু সময় পর নিজে নিজেই ভেতরে ঢুকে যায় অনেকের ক্ষেত্রে এগুলো আঙ্গুল দিয়ে ভেতরে ঢোকানোর প্রয়োজন হতে পারে আবার কারও কারও ক্ষেত্রে পাইলস এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে আঙ্গুল দিয়েও গোটাগুলো ভেতরে ঢোকানো যায় না৩ পায়খানার রাস্তায় ব্যথা হওয়াপাইলস রোগে সাধারণত তীব্র ব্যথা হয় না তবে যদি পায়ুপথের গোটা এমন পর্যায়ে চলে যায় যে সেগুলো আঙুল দিয়ে ঠেলেও ভেতরে ঢোকানো না যায় এবং সেগুলোতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে অনেক সময় তীক্ষ্ণ বা তীব্র ব্যথা হতে পারে এই ব্যথা সাধারণত ১২ দিন স্থায়ী হয় ব্যথা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে ঘরোয়া উপায়ে ব্যথার চিকিৎসা করা যায়৪ পায়খানার রাস্তায় চুলকানিপাইলস হলে কখনো কখনো পায়ুপথে বা এর মুখের আশেপাশে চুলকানি হতে পারে এছাড়া পায়ুপথ দিয়ে মিউকাস বা শ্লেষ্মাজাতীয় পিচ্ছিল ও আঠালো পদার্থ বের হতে পারে অনেক সময় মলত্যাগ করে ফেলার পরও বারবার মনে হতে পারে যে পেট পরিষ্কার হয় নি আবার মলত্যাগ করা প্রয়োজন পাইলস ও এনাল ফিসার বা গেজ রোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে কিছুটা মিল থাকলেও এই দুইটি পৃথক দুইটি রোগ দুটি রোগেই পায়ুপথে চুলকানি হতে পারে এবং টাটকা লাল রক্ত যেতে পারে তবে এনাল ফিসারে রক্ত খুব অল্প পরিমাণে যায় পাইলস এবং এনাল ফিসার এই দুইটির মধ্যে মূল পার্থক্য হচ্ছে—পাইলস হলে পায়ুপথে নরম গোটার মত দেখা দেয় গোটাগুলো সাধারণত মলত্যাগের পরে বের হয়ে আসে আবার কিছু সময় পর নিজে নিজেই ভেতরে ঢুকে যায় অথবা আঙ্গুল দিয়ে ভেতরে ঢোকাতে হয় এছাড়া পাইলস হলে পায়ুপথে শ্লেষ্মার মতো দেখতে পিচ্ছিল কিছু পদার্থ বের হতে পারেএনাল ফিসার বা গেজ রোগের ক্ষেত্রে সাধারণত এসব লক্ষণ দেখা যায় না আর এক্ষেত্রে প্রতিবার মলত্যাগের সময়ই তীব্র ব্যথা হয় পাইলসে সাধারণত ব্যথা হয় না এনাল ফিসার বা গেজ রোগের সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চাইলে আমাদের আর্টিকেলটি পড়তে পারেন কিছু কিছু জিনিস পাইলস এর ঝুঁকি বাড়ায় সেই সাথে ইতোমধ্যে কারো পাইলস রোগ হয়ে থাকলে তার তীব্রতাও বাড়িয়ে দেয় যেমন—শক্ত বা কষা পায়খানা মলত্যাগের সময় জোরে চাপ দেয়া অনেক সময় ধরে মলত্যাগের কসরত করা পায়খানার বেগ আটকে রাখা শারীরিক পরিশ্রম না করা অতিরিক্ত ওজন এছাড়া গর্ভাবস্থায় নানান শারীরিক পরিবর্তনের কারণেও কারও কারও ক্ষেত্রে পাইলস এর ঝুঁকি বেড়ে যায়স্বাভাবিক অবস্থায় পায়খানার রাস্তা বা পায়ুপথের মুখ সাধারণত বন্ধ থাকে যখন প্রয়োজন হয় তখন চাপ দিয়ে পায়ুপথের মুখ খুলে শরীর থেকে পায়খানা বা মল বের করে দেওয়া হয়পায়ুপথের মুখ বন্ধ রাখতে সেখানে বেশ কিছু জিনিস একসাথে কাজ করে তার মধ্যে বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ হল অ্যানাল কুশন এই কুশনগুলো ৩ দিক থেকে চাপ দিয়ে পায়ুপথের মুখ বন্ধ রাখতে সাহায্য করেযদি কোনো কারণে তিন দিকের এই কুশনগুলো ফুলে যায় সেগুলো থেকে রক্তক্ষরণ হয় সেগুলো নিচের দিকে নেমে যায় অথবা পায়ুপথের চারপাশে গোটার মত দেখা যায় তখন তাকে পাইলস বা অর্শ রোগ বলা হয়ে থাকে পাইলস এর ব্যথা উপশম করতে প্যারাসিটামল ঔষধ খাওয়া যেতে পারে এই ব্যথায় কার্যকরী অন্যান্য ঔষধ ও মলম পাওয়া যায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী সেগুলো ব্যবহার করতে পারেন ঘরোয়া পদ্ধতিতে অর্শ রোগের ব্যথা কমানোর ৪টি উপায় নিচে তুলে ধরা হলো—১ ব্যথার জায়গাটি কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা যায় ছোট বাচ্চাদের গোসল করানো হয় এমন আকারের একটি বোলে কুসুম গরম পানি নিয়ে সেখানে বসতে পারেন দিনে ৩ বার পর্যন্ত এটি করা যায় অন্য সময়ে কোথাও বসতে গেলে একটি বালিশ ব্যবহার করে সেটার ওপর বসা যেতে পারে২ একটা প্যাকেটে কিছু বরফ নিয়ে সেটা তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে পায়ুপথে গোটাগুলোর ওপরে লাগানো যায় এতে আরাম পাওয়া যাবে৩ বিছানায় শুয়ে পা উঁচু করে রাখলে পাইলস এর গোটাগুলোতে রক্ত চলাচল সহজ হবে ও ব্যথা উপশম হবে শোবার সময় পায়ের নিচে বালিশ দিতে পারেন এছাড়া খাটের পায়ার নিচে কোন কিছু দিয়ে খাটের এক পাশ উঁচু করে সেদিকে পা দেওয়া যেতে পারে৪ পায়ুপথ সবসময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন ও শুকনো রাখতে হবে মলত্যাগের পর জোরে ঘষাঘষি না করে আলতোভাবে জায়গাটি পরিষ্কার করে নিতে হবে টয়লেট পেপার হালকা ভিজিয়ে তারপর সেটা দিয়ে মুছতে পারেন ট্রামাডল এই ঔষধের একটি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হচ্ছে কোষ্ঠকাঠিন্য তাই অর্শ রোগের জন্য এটি খাওয়া যাবেনা প্যারাসিটামল ও ট্রামাডল একত্রে আছে এমন ব্যথানাশকও এড়িয়ে চলতে হবেআইবুপ্রোফেন এটি রক্তক্ষরণের ঝুঁকি বাড়ায় তাই আপনার পায়ুপথে ব্যথার সাথে রক্ত গেলে এটি খাওয়া যাবেনা কখন দ্রুত হাসপাতালে যাবেন পাইলস হলে কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি যেমন— টানা ৭ দিন বাসায় চিকিৎসা নেয়ার পরেও অবস্থার উন্নতি না হলে বারবার পাইলস এর সমস্যা হলে ৫৫ বছরের বেশি বয়সী কারও প্রথমবারের মত পাইলস এর লক্ষণ দেখা দিলে পাইলস থেকে পুঁজ বের হলে জ্বর বা কাঁপুনি হলে অথবা খুব অসুস্থ বোধ হলে অনবরত রক্তক্ষরণ হলে অত্যধিক রক্তপাত হলে (উদাহরণস্বরূপ যদি কমোডের পানি লাল হয়ে যায় বা পায়ুপথ দিয়ে রক্তের বড় বড় চাকা যায়) তীব্র অসহনীয় ব্যথা হলে পায়খানার রঙ কালচে বা আলকাতরার মত কালো মনে হলে পাইলস এর চিকিৎসা জন্য পাইলস হওয়ার কারণগুলো প্রতিরোধ করতে হবে অর্শ রোগ সারানোর ৬টি কার্যকর ঘরোয়া উপায় নিচে তুলে ধরা হলো—১ কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে বেশি বেশি আঁশ বা ফাইবারযুক্ত খাবার খতে হবে এর মধ্যে রয়েছে শাকসবজি ফলমূল ডাল লাল চাল ও লাল আটার তৈরি খাবার সেই সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে ফাইবার পানি শোষণ করার মাধ্যমে পায়খানা নরম করে তাই ফাইবারকে কাজ করতে হলে সারাদিনে অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে হবেএই দুটো কাজ করলে সাধারণত কয়েকদিনের মধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর হয় আর কয়েক সপ্তাহের মধ্যে পাইলস এর সব ধরনের লক্ষণ উপশম হয় ৬ সপ্তাহ অর্থাৎ দেড় মাস ধরে যদি খাবারে যথেষ্ট পরিমাণ ফাইবার নিশ্চিত করা যায় তাহলে ৯৫ শতাংশ পাইলস রোগীর পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া কমে আসে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে ইসবগুলের ভুসি একটি কার্যকর ঔষধপ্রতিদিনের খাবারে ফাইবারের পরিমাণ বাড়ানো নিয়ে বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিওটি দেখতে পারেন২ মলত্যাগের সময় খুব জোরে চাপ দেয়া থেকে বিরত থাকতে হবে পায়খানা যাতে নরম হয় এবং সহজেই মলত্যাগ করা যায় সেই উপদেশগুলো মেনে চলতে হবে৩ মলত্যাগে প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় ব্যয় করা যাবে না টয়লেটে বসে ম্যাগাজিন পেপার মোবাইলএসবে মনোনিবেশ করা বাদ দিতে হবে৪ পায়খানার চাপ আসলে তা আটকে রাখা উচিত না এতে পায়খানা আরও শক্ত হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় চাপ আসলে দেরি না করে বাথরুমে চলে যেতে হবে৫ নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করতে হবে ব্যায়ামের মধ্যে ভারী ব্যায়াম বা প্রতিদিন দৌড়ানো বেছে নিতে হবে তা নয় শরীরকে চলমান রাখতে হাঁটাচলা হালকা স্ট্রেচিং যোগব্যায়াম ইত্যাদির মধ্যে যেকোনোটাই বেছে নেওয়া যায় গবেষণায় দেখা গেছে কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে হাঁটাহাঁটি বা হালকা শরীরচর্চাও কার্যকরী ভূমিকা রাখেপ্রয়োজনে অল্প অল্প করে শুরু করতে পারেন দিনে ২০ মিনিট হাঁটুন এক বেলা দিয়ে শুরু করুন এরপর সকালসন্ধ্যা দুই বেলা করে হাঁটুন প্রথমে সপ্তাহে তিন দিন এভাবে হেঁটে আস্তে আস্তে সেটা পাঁচ দিনে নিয়ে আসুন ৬ ওজন অতিরিক্ত হলে তা কমিয়ে ফেলতে হবে ওজন বেশী হলে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে তাই পাইলস এর রোগীদের ওজন কমানোর পরামর্শ দেয়া হয় ওজন কমানোর কার্যকর উপায় নিয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের এ সংক্রান্ত আর্টিকেলগুলো পড়তে পারেন ঘরোয়া চিকিৎসার উপদেশ এবং ডাক্তারের ঔষধ সেবনের পরামর্শগুলো সঠিকভাবে মেনে চলার পরেও যদি অর্শ রোগের এর সমাধান না হয় সেক্ষেত্রে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে এ ব্যাপারে আপনার চিকিৎসক আপনাকে পরামর্শ দিবেন সাধারণত ৩ ধরনের অপারেশন করা হয়ে থাকে—১ হেমোরয়েডেকটোমি এই অপারেশনের মাধ্যমে পাইলস এর গোটাগুলো কেটে অপসারণ করা হয় ২ স্টেপলড হেমোরয়েডোপেক্সি এই পদ্ধতিতে সার্জারির মাধ্যমে পাইলস এর গোটাগুলো পুনরায় পায়ুপথের ভেতরে ঢুকিয়ে দেয়া হয়৩ হেমোরয়েডাল আর্টারি লাইগেশন এক্ষেত্রে পাইলস এর গোটাগুলোর রক্ত সরবরাহ অপারেশনের মাধ্যমে বন্ধ করে দেয়া হয় যাতে গোটাগুলো শুকিয়ে যায় পাইলস একটি অতি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা মলদ্বার বা পায়খানার রাস্তার মুখ যদি ফুলে যায় এবং সেখান থেকে রক্ত পড়ে অথবা পায়খানার রাস্তা থেকে যদি কোনো মাংসপিণ্ডের মত কিছু বের হয় তখন একে বলা হয় পাইলস চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম হেমোরয়েড সাধারণভাবে বাংলায় এটি অর্শ রোগ নামেও পরিচিত পাইলস একটি অতি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা মলদ্বার বা পায়খানার রাস্তার মুখ যদি ফুলে যায় এবং সেখান থেকে রক্ত পড়ে অথবা পায়খানার রাস্তা থেকে যদি কোনো মাংসপিণ্ডের মত কিছু বের হয় তখন একে বলা হয় পাইলস চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম হেমোরয়েড সাধারণভাবে বাংলায় এটি অর্শ রোগ নামেও পরিচিত গর্ভাবস্থায় শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসে ফলে নানান রকম হরমোনের মাত্রা বাড়েকমে এসময় প্রোজেস্টেরন হরমোনের আধিক্যের কারণে শরীরের পেশি এবং রক্তনালীগুলো শিথিল বা রিল্যাক্সড অবস্থায় থাকে বৃহদান্ত্র ও মলদ্বারের পেশি এবং রক্তনালীগুলো এরূপ শিথিল থাকার কারণে গর্ভবতীর পাইলস দেখা দেয় পাইলস রোগের কিছু সাধারণ উপসর্গ রয়েছে গর্ভাবস্থায় পাইলসের ক্ষেত্রেও এসব লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায়১ গর্ভাবস্থায় মলদ্বারে চুলকানিপাইলস হলে কখনো কখনো পায়খানার রাস্তায় বা এর মুখের আশেপাশে চুলকানি হতে পারে এছাড়া মলদ্বার দিয়ে মিউকাস বা শ্লেষ্মাজাতীয় পিচ্ছিল ও আঠালো পদার্থ বের হতে পারে অনেক সময় মলত্যাগ করে ফেলার পরও বারবার মনে হতে পারে যে পেট পরিষ্কার হয়নি—আবার মলত্যাগ করা প্রয়োজন২ মলদ্বারের মুখের অংশগুলো ফুলে যাওয়াপাইলসের ক্ষেত্রে মলত্যাগের পরে মলদ্বারের মুখের এক বা একাধিক অংশ ফুলে যায় কখনো নরম মাংসপিণ্ডের মতো কিছু অংশ বাইরে বের হয়ে আসে এগুলো কিছু সময় পর নিজে নিজেই ভেতরে ঢুকে যায় অনেকের ক্ষেত্রে এগুলো আঙ্গুল দিয়ে ভেতরে ঢোকানোর প্রয়োজন হতে পারে আবার কারও কারও ক্ষেত্রে পাইলস এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে আঙ্গুল দিয়েও এই মাংসপিণ্ড ভেতরে ঢোকানো যায় না৩ পায়খানার রাস্তায় ব্যথা হওয়াপাইলস রোগে সাধারণত তীব্র ব্যথা হয় না তবে যদি মলদ্বারের গোটা এমন পর্যায়ে চলে যায় যে সেগুলো আঙুল দিয়ে ঠেলেও ভেতরে ঢোকানো না যায় এবং সেগুলোতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে অনেক সময় তীব্র ব্যথা হতে পারে এই ব্যথা সাধারণত ১২ দিন স্থায়ী হয় ব্যথা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এ ছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে ঘরোয়া উপায়ে ব্যথার চিকিৎসা করা যায়৪ পায়খানার সাথে উজ্জ্বল লাল বর্ণের রক্ত যাওয়াপাইলস হলে সাধারণত পায়খানার পরে টয়লেট পেপার ব্যবহার করলে সেখানে রক্তের ফোটা লেগে থাকতে পারে অথবা কমোডে বা প্যানের গায়ে টকটকে লাল রক্তের ছোপ দেখা যেতে পারে পাইলস হলে মলদ্বারের মুখের জায়গাটি থেকে রক্তক্ষরণ হয় এই রক্ত বেরিয়ে গিয়ে জমাট বাধার সুযোগ পায় না এ কারণে এক্ষেত্রে তাজা লাল রঙের রক্ত দেখা যায়কিন্তু যদি কোনো কারণে পায়খানার সাথে গাঢ় খয়েরী রঙের রক্ত যায় অথবা আলকাতরার মতো কালো ও নরম পায়খানা হয় তবে তা সাধারণত পাইলস এর কারণে নয় পরিপাকতন্ত্রের কোনো অংশে রক্তপাতের কারণে পায়খানার সাথে এমন গাঢ় রক্ত যেতে পারে তাই এমনটা হলে রক্তপাতের কারণ জানার জন্য দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে গর্ভাবস্থায় পাইলস প্রতিরোধের জন্য দৈনন্দিন জীবনে সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয় গর্ভাবস্থায়ও এই নিয়মগুলো মেনে চললে গর্ভাবস্থায় পাইলসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে—১ ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে হবে পাইলসের প্রধান ও প্রথম কারণ হলো কোষ্ঠকাঠিন্য বা পায়খানা কষা হওয়া গর্ভাবস্থায় নানান শারীরিক পরিবর্তনের কারণে পায়খানা কষা হওয়ার প্রবণতা আরও বেড়ে যায় তাই এসময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে বেশি বেশি আঁশ বা ফাইবারযুক্ত খাবার খতে হবে আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে—শাকসবজি ফলমূল ডাল লাল চাল ও লাল আটার তৈরি খাবারসেই সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে ফাইবার পানি শোষণ করার মাধ্যমে পায়খানা নরম করে তাই ফাইবার ঠিকভাবে কাজ করতে হলে সারাদিনে অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে হবে গর্ভবতীর খাদ্য তালিকায় কেমন খাবার থাকা উচিত সেই সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে গর্ভাবস্থায় খাদ্যাভ্যাস এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন২ মলত্যাগের সময় খুব জোরে চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে পায়খানা যাতে নরম হয় এবং সহজেই মলত্যাগ করা যায় সেই উপদেশগুলো মেনে চলতে হবে৩ পায়খানার চাপ আসলে তা আটকে রাখবেন না এতে পায়খানা আরও শক্ত হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় চাপ আসলে দেরি না করে বাথরুমে চলে যেতে হবে৪ দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা পরিহার করার চেষ্টা করতে হবে সম্ভব হলে বসে বা আরামদায়ক ভঙ্গিতে হেলান দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করতে হবে৫ নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করতে হবে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করলে শরীরে রক্তচলাচল ভালো থাকে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস প্রতিরোধে সহায়তা করে৬ ওজন অতিরিক্ত হলে তা কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী হলে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে তাই পাইলস প্রতিরোধে ওজন কমানোর পরামর্শ দেয়া হয় ১ ব্যথার জায়গাটি কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা যায় ছোট বাচ্চাদের গোসল করানো হয় এমন ছোট আকারের একটি পাত্রে কুসুম গরম পানি নিয়ে সেখানে বসতে পারেন দিনে ৩ বার পর্যন্ত এটি করা যায় অন্য সময়ে কোথাও বসতে গেলে একটি বালিশ ব্যবহার করে সেটার ওপর বসা যেতে পারে২ একটা প্যাকেটে কিছু বরফ নিয়ে সেটা তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে মলদ্বারের ফোলা অংশের ওপরে লাগানো যায় এতে আরাম পাওয়া যাবে৩ বিছানায় শুয়ে পা উঁচু করে রাখলে মলদ্বারে রক্ত চলাচল সহজ হবে ও ব্যথা উপশম হবে শোবার সময় পায়ের নিচে বালিশ দিতে পারেন এছাড়া খাটের পায়ার নিচে কোন কিছু দিয়ে খাটের এক পাশ উঁচু করে সেদিকে পা দেওয়া যেতে পারে৪ মলদ্বার সবসময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন ও শুকনো রাখতে হবে মলত্যাগের পর জোরে ঘষাঘষি না করে আলতোভাবে জায়গাটি পরিষ্কার করে নিতে হবে টয়লেট পেপার হালকা ভিজিয়ে তারপর সেটা দিয়ে মুছতে পারেন৫ পায়খানার সময়ে ভেতর থেকে মাংসপিণ্ড বের হয়ে আসলে জোরে চাপাচাপি না করে আলতোভাবে ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে এক্ষেত্রে পিচ্ছিল জেলি অথবা তেল জাতীয় কিছু আঙুলে মেখে নিয়ে তারপর চেষ্টা করলে ব্যথা কম লাগবে ছোট শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পর্যন্ত সবাইকেই এই দুটি সমস্যা প্রায়ই ভোগায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জীবাণু পেটে ঢোকার কারণে এই সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয় আর কয়েকদিনের মাঝেই সেরে উঠেছোট শিশু থেকে শুরু করে প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ পর্যন্ত সবাইকেই এই দুটি সমস্যা প্রায়ই ভোগায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে জীবাণু পেটে ঢোকার কারণে এই সমস্যাগুলো সৃষ্টি হয় আর কয়েকদিনের মাঝেই সেরে উঠেডায়রিয়া ও বমি একসাথে হলে যে পরামর্শ শুধু ডায়রিয়া অথবা শুধু বমি হলেও একই পরামর্শ নরম পায়খানা বা পানির মত পাতলা পায়খানা দিনে তিন বা তার বেশী বার হলে সেটাকে ডায়রিয়া বলে তবে আপনার যদি কোন কারণে পায়খানা এমনিতেই নরম বা পাতলা হয় তবে দিনে স্বাভাবিকভাবে যতবার পায়খানা হয় তার চেয়ে বেশী বার হলে সেটা ডায়রিয়া ধরে নিবেনযে শিশুরা বুকের দুধ পান করে তাদের পায়খানা স্বাভাবিকভাবেই কিছুটা নরম আর আঠালো হয় সেটা ডায়রিয়া নয় সাধারণত আপনি নিজেই বাসায় বসে নিজের অথবা নিজের শিশুর চিকিৎসা করতে পারেন এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল পানিশূণ্যতা এড়াতে প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় ও খাবার খাওয়াযা যা করবেনবাসায় থেকে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিবেন প্রচুর পরিমাণে তরল পানীয় ও খাবার খাবেন যেমন পানি খাবার স্যালাইন চিড়ার পানি ভাতের মাড় কিংবা ডাবের পানি ভাতের মাড়ে সামান্য লবণ দিতে পারেন বমি ভাব হলে ছোট ছোট চুমুকে খাওয়ার চেষ্টা করবেন বাজার থেকে কেনা ফলের জুস কোমল পানীয় কফি চিনি দেয়া চা পরিহার করবেন কারণ এসব খেলে ডায়রিয়া আরো খারাপ হতে পারে যখনই মনে হবে খেতে পারবেন তখনই খেয়ে নিবেন নির্দিষ্ট কোন খাবার খাওয়ার প্রয়োজন নেই যেমন এমন ধারণা প্রচলিত আছে যে ডায়রিয়ার রোগী সাদা ভাত আর কাঁচকলা ছাড়া আর কিছুই খেতে পারবে না এই ধারণা টা সঠিক নয় প্রতিবার পাতলা পায়খানার পর ২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ৫০১০০ মিলি তরল পানীয় খাওয়াবেন ২ থেকে ১০ বছর বয়সী শিশুদের ১০০২০০ মিলি তরল পানীয় খাওয়াবেন আর ১০ বছরের বেশী বয়সী শিশু এবং বড়দেরকে তরল পানীয় খাওয়াবেন যতটুকু তারা খেতে পারে শিশুকে বুকের দুধ বা বোতলের দুধ খাওয়ানো চালিয়ে যাবেন শিশু বমি করলে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়াতে পারেন ফর্মুলা বা শক্ত খাবার খাচ্ছে এমন শিশুদের দুই বেলা খাবারের মাঝে ছোট ছোট চুমুকে পানি খাওয়াবেন শিশুকে প্রতি তিনচার ঘণ্টা পর পর খাওয়াবেন একবারে অনেক বেশী খাবার না দিয়ে বার বার অল্প অল্প করে খাওয়ানো শ্রেয় বাচ্চাদের ফর্মুলা যে পরিমাণে নির্দেশনা দেওয়া আছে সেভাবেই বানিয়ে খাওয়াবেন তার চেয়ে পাতলা ফর্মুলা বানিয়ে বাচ্চাকে খাওয়াবেন না অস্বস্তি বোধ করলে প্যারাসিটামল খেতে পারেন শিশুকে ওষুধ দেওয়ার আগে ওষুধের সাথে থাকা নির্দেশিকা ভালো মত পড়ে নিবেন আর অবশ্যই বয়স অনুযায়ী সঠিক পরিমাণে ওষুধ খাওয়াবেন ডায়রিয়ার প্রকোপ কমাতে এবং তাড়াতাড়ি সারিয়ে তুলতে ডাক্তারের পরামর্শে শিশুকে জিঙ্ক ট্যাবলেট বা সিরাপ খাওয়াতে পারেন সাধারণত ১০ থেকে ১৪ দিন জিঙ্ক খাওয়ার পরামর্শ দেয়া হয় ১২ বছরের কম বয়সী শিশুদের ডায়রিয়া বন্ধ করার ওষুধ দিবেন না ১৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের অ্যাসপিরিন (aspirin) আছে এমন ওষুধ দিবেন না খেয়াল করে দেখবেন ওষুধের নামের নিচে ছোট করে aspirin শব্দটি লেখা আছে কি নাঘরে বসে কীভাবে খাবার স্যালাইন বানাবেন ১এক লিটার পানি২আধা চা চামচ লবণ ৩ছয় চা চামচ চিনি (চামচের উপরে চিনি নিয়ে সমান করে নিবেন যাতে পরিমাপ ঠিক থাকে) দোকান থেকে খাবার স্যালাইন কিনলে প্যাকেটের গায়ে লেখা নির্দেশনা অনুযায়ী তৈরি করবেন প্রাপ্তবয়স্ক ও বাচ্চাদের ক্ষেত্রে সাধারণত৫৭ দিনের মধ্যে ডায়রিয়া বন্ধ হয়ে যায় ১২ দিনের মধ্যে বমি বন্ধ হয়ে যায় বমি বা ডায়রিয়া সেরে যাওয়ার পরে কমপক্ষে দুই দিন বাসায় থাকবেন স্কুলে বা কর্মক্ষেত্রে ফিরে যাবেন না নাহলে অন্যদের মাঝেও বমি বা ডায়রিয়া ছড়িয়ে যেতে পারেডায়রিয়া ও বমি ছড়িয়ে পড়া ঠেকাতে যা করবেনবারবার সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুবেন পায়খানা কিংবা বমির সংস্পর্শে এসেছে এমন কাপড় বা বিছানার চাদর গরম পানি দিয়ে আলাদাভাবে ধুয়ে ফেলবেন পানির কল দরজার হাতল টয়লেট সিট ফ্লাশের হাতল জীবাণুর সংস্পর্শে আসতে পারে এমন জায়গা প্রতিদিন পরিষ্কার করবেনঅসুস্থ অবস্থায় যা যা করবেন নাযদি সম্ভব হয় অন্যদের জন্য রান্না করা থেকে বিরত থাকুন আপনার থালাবাসন ছুরিচামচ গামছাতোয়ালে জামাকাপড় কারো সাথে ভাগাভাগি করে ব্যবহার করবেন না লক্ষণগুলো চলে যাবার পর ২ সপ্তাহ পার হওয়ার আগে সুইমিং পুলে নামবেন না এক বছরের কম বয়সী শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে আপনি চিন্তিত বোধ করেন পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশুর পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দেয় – যেমন আগের তুলনায় কাঁথা ন্যাপি বা ডায়াপার কম ভেজাচ্ছে শিশু বুকের দুধ বোতলের দুধ কিংবা ফর্মুলা খাওয়া কমিয়ে দেয় খাবার স্যালাইন খাওয়ার পরেও যদি আপনার অথবা আপনার ৫ বছরের বেশি বয়সী শিশুর মধ্যে পানিশূন্যতার লক্ষণ থেকে যায় আপনার অথবা আপনার শিশুর যদি পায়খানার সাথে রক্ত যায় বা পায়খানার রাস্তা দিয়ে রক্ত যায় যদি ২ দিনের বেশি সময় ধরে বমি বা ৭ দিনের বেশি সময় ধরে ডায়রিয়া থাকেডায়রিয়া হলে কখন দ্রুত হাসপাতালে যাবেন জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যাবেন যদি আপনার অথবা আপনার শিশুর১বমির সাথে রক্ত আসে অথবা কফি দানার মত কালচে বাদামী রঙের কিছু আসে ২সবুজ বা হলুদ (পীত) রঙের বমি হয়৩ঘাড় শক্ত হয়ে যায় আর উজ্জ্বল আলোর দিকে তাকালে চোখে ব্যথা হয় ৪হঠাৎ করেই প্রচণ্ড মাথাব্যথা বা পেটে ব্যথা ৫বারবার বমি হয় পেটে কিছু রাখতে না পারে৬বিষাক্ত কিছু গিলে ফেলে খুব অসুস্থ বোধ হয় প্রচণ্ড বা তীব্র ব্যথা বলতে আমরা যা বুঝি সারাক্ষণ থাকে এবং এতটাই তীব্র হয় যে কোন কিছু বলা বা চিন্তা করা যায় না ঘুমানো যায় না নড়াচাড়া করা বিছানা থেকে ওঠা বাথরুমে যাওয়া হাত মুখ ধোওয়া বা গোসল করা কাপড় পরা ইত্যাদি কাজ করাও খুব কঠিন হয়ে যায় মৃদু ব্যথা বলতে আমরা যা বুঝি ব্যথা আসা যাওয়া করে ব্যথাটা বিরক্তিকর তবে আপনার দৈনন্দিন কাজ যেমন অফিসে যাওয়া ইত্যাদিতে ব্যঘাত ঘটায় না মাঝারি ব্যথা বলতে আমরা যা বুঝি ব্যথা সারাক্ষণ আছে কোন কাজে মনোযোগ দিতে কষ্ট ঘুমাতে কষ্ট হয় ব্যথা সত্ত্বেও বিছানা থেকে ওঠা হাত মুখ ধোওয়া বা গোসল করা কাপড় পরা ইত্যাদি কাজ করা সম্ভব ঠিক কী কারণে বমি বা ডায়রিয়া হচ্ছে তা হয়তো নাও জানা যেতে পারে তবে বমি বা ডায়রিয়ার মূল কারণগুলোর চিকিৎসা আসলে একই রকমসবচেয়ে উল্লেখযোগ্য কারণগুলো হলপাকস্থলীতে জীবাণুর আক্রমণ বা গ্যাস্ট্রোএন্টেরাইটিস (gastroenteritis) নরোভাইরাস (পাশ্চাত্য দেশগুলোতে একে vomiting bug ও বলে) খাদ্যে বিষক্রিয়া (food poisoning)ডায়রিয়ার অন্যান্য কিছু কারণ হলবিভিন্ন ওষুধ – যে কোন ওষুধের সাথে দেওয়া নির্দেশিকা পড়ে দেখবেন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো কী কী নির্দিষ্ট কোন খাবারে এলার্জি বা বিশেষ কোন খাবার সহ্য না হওয়া ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম বা আইবিএস (Irritable Bowel Syndrome/IBS) ইনফ্ল্যামেটরি বাওয়েল ডিজিজ বা আইবিডি (Inflammatory Bowel Disease/IBD) সিলিয়াক ডিজিজ (coeliac disease) ডাইভার্টিকুলার ডিজিজ (diverticular disease)নিচের কারণগুলোতে বমি হতে পারে পিঠ ও কোমর ব্যথা খুবই পরিচিত সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ব্যথার পেছনে কোনো মারাত্মক কারণ থাকে না এ সমস্যাগুলো সাধারণত আপনা আপনিই সেরে ওঠে তবে কিছু গুরুতর ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার প্রয়োজন হয়পিঠ ও কোমর ব্যথা খুবই পরিচিত সমস্যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এসব ব্যথার পেছনে কোনো মারাত্মক কারণ থাকে না এ সমস্যাগুলো সাধারণত আপনা আপনিই সেরে ওঠে তবে কিছু গুরুতর ক্ষেত্রে সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার প্রয়োজন হয় লিগামেন্ট হলো সুতার মতো টিস্যু যা বিভিন্ন হাড় ও জয়েন্টের (গিরার) মধ্যে সংযোগ স্থাপন করতে সাহায্য করে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে শরীরের পেশি ও লিগামেন্টে হঠাৎ করে টান অথবা চাপ খেলে কোমর ব্যথা হয়পিঠ ও কোমর ব্যথার কারণসমূহমেরুদণ্ডের হাড়গুলোর মাঝে কিছু বিশেষ চাকতি বা ডিস্ক থাকে এসব ডিস্ক সরে গেলে পিঠ ও কোমর ব্যথা হয় পাশাপাশি কোমর নিতম্ব ও পায়ে ঝিম ঝিম বা খচখচ্ করা বোধ কমে যাওয়া ও দুর্বলতার মতো লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারেকখনো কখনো সুনির্দিষ্ট কারণ ছাড়াই ব্যথা হতে পারে এমনকি মানসিক চাপে থাকলেও এই ধরনের ব্যথা হয়পিঠ ও কোমর ব্যথার লক্ষণঃ যৌনাঙ্গ অথবা নিতম্বের আশেপাশে বিশেষ করে পায়খানার রাস্তার চারিদিকে অবশ লাগা কিংবা খোঁচা খোঁচা লাগা স্বাভাবিক প্রস্রাবপায়খানার চাপ ধরে রাখতে না পারা প্রস্রাব করতে সমস্যা হওয়া অথবা প্রস্রাব বন্ধ হয়ে যাও কোমরের নিচ থেকে দুর্বল হয়ে যাওয়া বুকে ব্যথা হঠাৎ ওজন কমে যাওয়া (এটি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে জ্বর আসা গুরুতর দুর্ঘটনা কবলিত হওয়া যেমন সড়ক দুর্ঘটনা পিঠ অথবা কোমরের কোথাও ফুলে কিংবা বেঁকে যাওয়া সাধারণত পিঠ ও কোমর ব্যথা ঘরোয়া চিকিৎসাতেই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায় ব্যথা কমানোর ঘরোয়া উপায়ের মধ্যে রয়েছে—১ দৈনন্দিন কাজ দুই–তিন দিন বিশ্রাম নেওয়ার পরে দৈনন্দিন কাজে ফিরে যেতে হবে এতে ব্যথা দ্রুত সেরে ওঠে২ শরীরচর্চা সম্ভব হলে ব্যথা কমে যাওয়ার ২–৩ সপ্তাহ পর প্রতিদিন হালকা ব্যায়াম শুরু করা উচিত হাঁটা যোগব্যায়াম বা ইয়োগা ও সাঁতার কাটার মতো ব্যায়ামও করা যেতে পারে এতে করে পেট পিঠ ও কোমরের পেশি শক্ত হয় এবং রক্ত সঞ্চালন বাড়ে ফলে ব্যথা তাড়াতাড়ি সেরে ওঠে৩ সেঁক ঠান্ডা অথবা গরম সেঁক নিলে সাময়িকভাবে আরাম পেতে পারেন প্রথম দুই–তিনদিন ঠান্ডা সেঁক দিয়ে এরপর গরম সেঁক দেওয়া ভালোঠান্ডা সেঁকের জন্য তোয়ালে বা মোটা গামছা দিয়ে বরফ মুড়ে এরপর ব্যথার স্থানে লাগাতে পারেন ফ্রিজে বরফ না থাকলে ফ্রোজেন সবজির প্যাকেট ব্যবহার করা যায় গরম সেঁকের জন্য একইভাবে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করতে পারেন তবে সেক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে৪ ব্যথানাশক ঔষধ প্যারাসিটামল অথবা আইবুপ্রোফেন এর মতো ব্যথানাশক সেবন করতে পারেন এ ছাড়া ব্যথানাশক জেল ও ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন সেক্ষেত্রে প্যাকেটের ভেতরে থাকা নির্দেশিকা ভালোমতো পড়ে নিতে হবেউল্লেখ্য ব্যথানাশক সেবনের আগে সেটি আপনার জন্য নিরাপদ কি না সেই সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিন এই বিষয়ে সন্দেহ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে৫ ম্যাসাজ ও মালিশ ব্যথার স্থানে হালকা ম্যাসাজ অর্থাৎ আলতোভাবে মালিশ করলে আরাম লাগতে পারে তবে জোরে জোরে মালিশ করা থেকে বিরত থাকতে হবে৬ ইতিবাচক মনোভাব মানসিকভাবে দৃঢ় থাকতে হবে পিঠ ও কোমর ব্যথা হওয়া সত্ত্বেও যারা ইতিবাচক মনোভাব নিয়ে স্বাভাবিক জীবনধারা বজায় রাখে তারা দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেভুল ধারণা পিঠ অথবা কোমর ব্যথা হলে সম্পূর্ণ বিশ্রাম বা বেড রেস্টএ থাকতে হবে ব্যথা হলে প্রথম কয়েকদিন বিশ্রাম নিতে পারেন এরপর ধীরে ধীরে স্বাভাবিক কাজে ফিরে যেতে হবে দুই–তিন সপ্তাহ পর থেকে আস্তে আস্তে ব্যায়াম শুরু করতে পারেন ২–১ দিনের বেশি পূর্ণ বিশ্রামে থাকলে ব্যথা আরও বাড়তে পারে ওপরে উল্লেখকৃত নয়টি বিপদচিহ্নের কোনোটি না থাকলে আপনি যত তাড়াতাড়ি স্বাভাবিক কাজকর্ম শুরু করতে পারবেন ততই ভালো তবে মনে রাখতে হবে পিঠ ও কোমর ব্যথার ছয় সপ্তাহের মধ্যে ভারী কাজ কিংবা পিঠ ও কোমর বাঁকাতে হয় এমন কাজ করা যাবে না অনেকের ক্ষেত্রেই পিঠ ও কোমর ব্যথা এক সপ্তাহের মধ্যেই কমে যায় সাধারণত চার থেকে ছয় সপ্তাহের মধ্যে ব্যথা পুরোপুরি সেরে যায়পিঠ ও কোমর ব্যথার জন্য সাধারণত ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না তবে নিচের ক্ষেত্রগুলোতে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত—ব্যথা শুরু হওয়ার কয়েক সপ্তাহ পরেও কোনো উন্নতি না হলে ব্যথার কারণে দৈনন্দিন কাজে বাধা সৃষ্টি হলে ব্যথা খুবই তীব্র হলে অথবা দিন দিন বাড়তে থাকলে আগে থেকেই কোনো রোগের কারণে পিঠ অথবা কোমর ব্যথা থাকলে ব্যথা নিয়ে বেশি চিন্তিত হলে অথবা মানিয়ে নিতে সমস্যা হলেডাক্তার রোগীর সাথে কথা বলে এবং প্রয়োজনীয় পরীক্ষানিরীক্ষা করে ব্যথার সঠিক কারণ নির্ণয় করবেন সেই অনুযায়ী তিনি উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি নিয়ে পরামর্শ দিবেন কিছু ক্ষেত্রে রোগীকে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলা হতে পারেপিঠ ও কোমর ব্যথায় সবসময় পরীক্ষানিরীক্ষার প্রয়োজন হয় না তবে প্রয়োজনবোধে এক্সরে এমআরআই ও সিটি স্ক্যান এর মতো পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হতে পারেডাক্তার ফিজিওথেরাপি নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারে এ ছাড়া কিছু ফ্রিহ্যান্ড ব্যায়াম শিখিয়ে দিতে পারে দ্রুত সুস্থতা লাভের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চলা ব্যায়াম করা এবং নিয়মিত ঔষধ সেবন করা গুরুত্বপূর্ণউল্লেখ্য অল্প সংখ্যক রোগীর ক্ষেত্রেই অপারেশনের কথা বিবেচনা করা হয় সাধারণত নির্দিষ্ট কিছু রোগের কারণে পিঠ ও কোমর ব্যথা হলে কেবল সেসব ক্ষেত্রেই অপারেশন এর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় যখন জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের কাছে যাবেন কিছু ক্ষেত্রে রোগীকে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যেতে হবে এগুলো গুরুতর কোনো সমস্যার লক্ষণ হতে পারে এবং ইমারজেন্সি ভিত্তিতে বিশেষ চিকিৎসা শুরু করতে হতে পারে এসব ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে— উপরে উল্লেখিত ৯টি বিপদচিহ্ন থাকা বিশ্রামের পরেও ব্যথার উন্নতি না হওয়া অথবা রাতে ব্যথা বেড়ে যাওয়া এতটাই তীব্র ব্যথা হওয়া যে ঘুমের সমস্যা হাঁচি কাশি ও পায়খানা করার সময়ে ব্যথা বেড়ে যাওয়া ব্যথার জন্য সাধারণ কাজকর্মে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে ঘাড় থেকে ব্যথা হওয়া স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস সঠিক দেহভঙ্গি ও সুস্থ জীবনধারা মেনে চলার মাধ্যমে সহজেই পিঠে ব্যথা প্রতিরোধ করা যায়স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসকিছু খাবার হাড়ের জন্য খুব উপকারী যেমন ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি ভিটামিন কে ও বিভিন্ন মিনারেল বা খনিজ লবণযুক্ত খাবার এগুলো পিঠে ব্যথার ঝুঁকি কমায় তাই এসব পুষ্টি উপাদানযুক্ত খাবার আমাদের খাদ্যতালিকায় নিয়মিত থাকা উচিত এই ধরনের খাবারের মধ্যে রয়েছে—দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার সবুজ শাকসবজি মাছ ও মাছের কাঁটা বাদাম ডিম ডালসঠিক দেহভঙ্গিঅস্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গিতে কাজ করলে অথবা বিশ্রাম নিলে অনেক ক্ষেত্রেই পিঠ ও কোমর ব্যথা প্রকট আকার ধারণ করে তাই—অতিরিক্ত শক্ত অথবা নরম বিছানা পরিহার করে মেরুদন্ডকে সঠিকভাবে সাপোর্ট দেয় এমন বিছানা ব্যবহার করুন জাজিম ও একটি পাতলা তোষকের বিছানায় ঘুমানোর অভ্যাস গড়ে তুলুন উপুড় হয়ে শোয়ার অভ্যাস পরিত্যাগ করুন বিছানা থেকে ওঠার সময়ে একপাশে কাত হয়ে উঠুন দীর্ঘক্ষণ বসে থাকা পরিহার করে মাঝে মাঝে উঠে হাঁটাচলা করুন দীর্ঘক্ষণ বসে থাকার ফলে কোমরের মাংসপেশিতে চাপ পড়ে ফলে ব্যথা হয় একটানা বসে থাকতে হলে নরম গদি অথবা স্প্রিং যুক্ত চেয়ারের পরিবর্তে কাঠ অথবা প্লাস্টিকের চেয়ার ব্যবহার করুন কোমরের পেছনে ভাঁজ করা তোয়ালে চাদর অথবা ছোটো বালিশ ব্যবহার করতে পারেন একটানা দাঁড়িয়ে কাজ করবেন না যদি করতেই হয় তাহলে একটি টুলে এক পা রেখে সেটিকে কিছুক্ষণ বিশ্রাম দিন এরপর সেই পা সরিয়ে অন্য পা টুলে রাখুন কোমর সোজা রেখে চেয়ারে বসুন কোথাও বসার সময়ে এভাবে বসবেন যেন আপনার হাঁটু কোমরের চেয়ে একটু ওপরের লেভেলে থাকে প্রয়োজনে ছোটো টুল ব্যবহার করতে পারেন পিঠ ও কোমর ব্যথা প্রতিরোধ করতে ১ ইঞ্চি পরিমাণের কম হিলের আরামদায়ক জুতা পরুন এতে দাঁড়ানোর সময়ে মেরুদণ্ডের ওপর কম চাপ পড়বে সতর্কতার সাথে হাঁটাচলা করুন হাঁটার সময় সতর্কতা না থাকলে পা পিছলে ব্যথা পাওয়ার সম্ভাবনা থাকে লম্বা সময় ধরে গাড়ি চালাতে হলে প্রতি ঘন্টায় বিরতি নিয়ে একটু হাঁটুন সিট যথাসম্ভব পিছিয়ে নিন যেন সিটে বসতে শরীর ভাঁজ করতে না হয় গাড়ি থেকে নামার সাথে সাথে ভারী জিনিস তোলা থেকে বিরত থাকুন ভারী জিনিস তোলা ও বহন করার সময়ে সতর্কতা অবলম্বন করুন যেমন— অন্যের সাহায্য নিয়ে ভালোমতো ধরে ওঠান পা ফাঁকা করে নিন এতে ভার বহনে সুবিধা হবে জিনিস শরীরের যতটা সম্ভব কাছাকাছি রেখে এরপর তুলুন নিচু হতে কোমর সামনের দিকে না বাঁকিয়ে বরং হাঁটু ভাঁজ করুন বহন করার সময়ে কিছুটা সামনের দিকে ঝুঁকে বহন করুন মাঝে মাঝে বিশ্রাম নিয়ে কাজ করুন কখনও ভারী জিনিস তোলার কিংবা বহন করার সময়ে শরীর বাঁকাবেন নাসুস্থ জীবনধারাসুস্থ জীবনধারা মেনে চলার মাধ্যমে পিঠ ও কোমর ব্যথা প্রতিরোধ করা সম্ভব মাসিক বা পিরিয়ডের ব্যথা হওয়া একটি কমন ঘটনা এটি মাসিক চক্রের একটি স্বাভাবিক অংশ বেশিরভাগ নারীই জীবনের কোনো এক সময়ে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেনমাসিক বা পিরিয়ডের ব্যথা হওয়া একটি কমন ঘটনা এটি মাসিক চক্রের একটি স্বাভাবিক অংশ বেশিরভাগ নারীই জীবনের কোনো এক সময়ে এই সমস্যার সম্মুখীন হয়ে থাকেন পিরিয়ডের ব্যথা সাধারণত পেট কামড়ানোর মতো ব্যথা হয় এই ব্যথা কোমরে ও ঊরুতে ছড়িয়ে যেতে পারেকখনো কখনো পেটের ব্যথাটি কিছুক্ষণ পরপর প্রচণ্ডভাবে কামড়ে ধরা বা খিঁচ ধরার মতো করে আসাযাওয়া করে অন্যান্য সময়ে একটানা ভোঁতা ধরনের ব্যথা হতে পারেব্যথাটি একেক মাসিকের সময়ে একেক রকম হতে পারে কোনো কোনো মাসে হয়তো সামান্য অস্বস্তির মতো অনুভব হয় অথবা একেবারেই কোনো ব্যথা হয় না অন্যান্য মাসিকের সময়ে আবার বেশ ব্যথা হতে পারেতবে কখনো কখনো মাসিক চলাকালীন সময়ের বাইরেও তলপেটে এরকম ব্যথা হতে পারে সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার সময়েই পিরিয়ডের ব্যথা শুরু হয় তবে কারও কারও ক্ষেত্রে মাসিক শুরু হওয়ার বেশ কিছুদিন আগে থেকেই ব্যথা শুরু হয়ে যায়পিরিয়ডের ব্যথা সাধারণত ৪৮ থেকে ৭২ ঘণ্টা পর্যন্ত স্থায়ী হয় তবে এরচেয়ে বেশি সময় ধরেও ব্যথা থাকতে পারে সাধারণত মাসিকের যেই সময়ে সবচেয়ে বেশি রক্তক্ষরণ হয় সেই সময়ে ব্যথার পরিমাণও সবচেয়ে বেড়ে যায়কিশোরীদের ক্ষেত্রে সাধারণত প্রথমবারের মতো পিরিয়ড শুরু হওয়ার সময়ে প্রায়ই ব্যথা হয়ে থাকেপিরিয়ডের ব্যথার পেছনে কোনো অন্তর্নিহিত রোগ না থাকলে বয়স বাড়ার সাথে সাথে সাধারণত এই ব্যথা কমতে থাকে সন্তান জন্মদানের পরে অনেকের পিরিয়ডের ব্যথা কমে যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পিরিয়ডের ব্যথা তেমন তীব্র বা জটিল রূপ ধারণ করে না একারণে বাড়িতেই চিকিৎসা করা যায় চিকিৎসার উপায়গুলো নিচে আলোচনা করা হয়েছে—১ সেঁক নিনগরম সেঁক নিনগবেষণায় দেখা গেছে যে পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর প্রচলিত কিছু ঔষধের চেয়ে গরম সেঁক বেশি কিংবা সমানভাবে কার্যকর গরম সেঁক প্যারাসিটামলের চেয়ে বেশি কার্যকর এবং আইবুপ্রোফেনের সমান কার্যকরসেই সাথে গরম সেঁকের আরেকটা সুবিধা হলো এতে কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেইযেভাবে সেঁক দিবেন একটি হট ওয়াটার ব্যাগ তোয়ালে অথবা মোটা গামছা দিয়ে মুড়িয়ে পেটের ওপর রাখতে পারেন হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন যেমন—সহনীয় তাপমাত্রার পানি ব্যবহার করতে হবে মুখ ভালোভাবে আটকানো আছে কি না দেখে নিতে হবে একটি নির্দিষ্ট সময় পরপর ব্যাগ উল্টেপাল্টে দিতে হবেহট ওয়াটার ব্যাগ এর পরিবর্তে ইলেকট্রিক হিটিং প্যাড সহ অন্যান্য উপায়ে সেঁক নেওয়া যেতে পারে২ আদা সেবন করুনআদা পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে পারে[৪][৫] যারা নিয়মিত পিরিয়ডের ব্যথায় ভুগেন তারা পিরিয়ডের ব্যথা শুরু হওয়ার আগেই আদা খাওয়া শুরু করতে পারেন আদা কুচি করে এমনি এমনি খেতে পারেন অথবা গরম পানি অথবা চায়ের সাথে মিশিয়ে পান করতে পারেন মাসিকের প্রথম ৩–৪ দিন দৈনিক তিনবেলা করে এভাবে আদা কুচি খেতে পারেন৩ শ্বাসের ব্যায়াম করুনপিরিয়ডের ব্যথা কমানোর একটি ভালো উপায় হলো শ্বাসের ব্যায়াম করা যেভাবে শ্বাসের ব্যায়াম করতে হবে—বুকের ওপরে এক হাত আর পেটের ওপরে আরেক হাত রাখুন নাক দিয়ে বড় করে শ্বাস নিন এমনভাবে শ্বাস নিতে হবে যেন বাতাস বুকের গভীরে ঢোকে এবং পেট ফুলে ওঠে এভাবে শ্বাস নিলে পেটের ওপরের হাতটা ওপরে উঠে আসবে তারপর মুখ দিয়ে এমনভাবে শ্বাস ছাড়ুন যেন মনে হয় একটি মোমবাতি নেভানো হচ্ছেশ্বাস ছাড়ার পর পেটে রাখা হাত আবার আগের জায়গায় ফেরত আসবে৪ ব্যায়াম করুনগবেষণায় দেখা গিয়েছে নিয়মিত ব্যায়াম কিংবা যেকোনো উপায়ে শরীর সচল রাখলে পিরিয়ডের ব্যথা অনেকখানি কমে আসতে পারে[৬] এজন্য সপ্তাহে ৩ দিন বা তার বেশি ৪৫ মিনিট থেকে এক ঘণ্টা করে নিয়মিত শরীরচর্চা করতে হবে আপনি চাইলে ভারী ব্যায়াম ছাড়াও সাঁতার কাটা হাঁটা সাইকেল চালানো ও ইয়োগার মতো হালকা ব্যায়াম বেছে নিতে পারেনপিরিয়ডের সময়ে ব্যথার কারণে ব্যায়াম করার ইচ্ছা নাই থাকতে পারে সেক্ষেত্রে সম্ভব হলে হাঁটাচলার মতো হালকা ব্যায়াম করুন৫ পেট ম্যাসাজ করুনতলপেট ও এর আশেপাশে আলতোভাবে ম্যাসাজ করলে সেটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে৬ রিল্যাক্স করুনমানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন যোগব্যায়াম ও মেডিটেশন ব্যথা ও অস্বস্তির অনুভূতি থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিতে সাহায্য করতে পারে৭ কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুনকুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করার মাধ্যমে পিরিয়ডের ব্যথা কমানো যায় এটি আপনাকে রিল্যাক্স করতেও সাহায্য করবে আইবুপ্রোফেন ও অ্যাসপিরিনপিরিয়ডের ব্যথা কমাতে আইবুপ্রোফেন অত্যন্ত কার্যকরী প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামের একটি কেমিক্যালের কারণে পিরিয়ডের ব্যথা হয় আইবুপ্রোফেন এই কেমিক্যালকে থামিয়ে দেয় ফলে ব্যথা কমে যায়সাধারণত এই ঔষধ সেবনের পরে ২০–৩০ মিনিটের মধ্যে ব্যথা কমে যায়আইবুপ্রোফেন ৪০০ মিলিগ্রাম ট্যাবলেট দিনে ৩ থেকে ৪টা খেতে হবে ৪ থেকে ৬ ঘন্টা পর পর এই ঔষধ খেতে হয় শুধুমাত্র বয়স ১২ বছর অথবা তার বেশি হলেই এই ঔষধ সেবন করতে পারবেনআইবুপ্রোফেন এনএসএআইডি গ্রুপের ঔষধ এটি ভরা পেটে সেবন করতে হয় নাহলে পেটের সমস্যা হতে পারে কোনো খাবার (যেমন এক গ্লাস দুধ) খেয়ে এরপর ঔষধটি খেতে পারেন পিরিয়ডের ব্যথার জন্য সাধারণত ১–২ দিনের বেশি এই ঔষধ খাওয়ার প্রয়োজন হয় নাপিরিয়ডের ব্যথা কমাতে আইবুপ্রোফেন প্যারাসিটামলের চেয়েও বেশি কার্যকর তবে কিছু ক্ষেত্রে এই ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকতে হবে যেমন—অ্যাজমা বা হাঁপানির রোগী হলে পাকস্থলী লিভার কিডনি ও হার্টের সমস্যা থাকলে পেটে আলসার অথবা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা থাকলেউল্লেখ্য পিরিয়ডের ব্যথার জন্য আইবুপ্রোফেনের পরিবর্তে এনএসএআইডি গ্রুপের আরেকটি ঔষধ সেবন করা যেতে পারে যার নাম অ্যাসপিরিন এটিও ভরা পেটে সেবন করতে হয় তবে ১৬ বছরের কম বয়সীদের এটি সেবন করা উচিত নয়অনেকসময় এসব ঔষধ সেবনের পূর্বে গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ (যেমন ওমিপ্রাজল) সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয় এই বিষয়ে চিকিৎসকের পরামর্শ নিনপ্যারাসিটামলযাদের বয়স ১২ বা তার বেশি তারা ৫০০ থেকে ১০০০ মিলিগ্রাম করে প্যারাসিটামল খেতে পারবেন ৫০০ মিলিগ্রামের ট্যাবলেট হলে ৪–৬ ঘন্টা পর পর ১টা অথবা ২টা খেতে পারেন তবে সবমিলিয়ে ২৪ ঘন্টায় ৫০০ মিলিগ্রামের ৮টা ট্যাবলেটের বেশি সেবন করা যাবে নাঔষধ কেনার আগে প্যাকেটের গায়ের লেখা পড়ে নিতে পারেন এতে বয়স অনুযায়ী ডোজ মনে রাখতে সুবিধা হবে১২ বছরের কম বয়সীদের প্যারাসিটামলের ডোজ জানতে পড়ুন শিশুদের জন্য প্যারাসিটামলঅনেকসময় পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে একটা ঔষধ কাজ নাও করতে পারে তখন আইবুপ্রোফেন আর প্যারাসিটামল দুটোই একসাথে খেতে পারেনএসব ঔষধ সেবনের পরেও যদি ব্যথা না কমে তাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে তিনি এনএসএআইডি গ্রুপের অন্য কোনো ঔষধ হরমোনাল ঔষধ কিংবা জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন এক্ষেত্রে রোগীর অবস্থা অনুযায়ী সঠিক ঔষধ ও ডোজ নির্ধারণ করা হবেকখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে মাসিকের সময়ে অসহনীয় ব্যথা হলে অথবা পিরিয়ডের স্বাভাবিক প্যাটার্নে পরিবর্তন (যেমন অনিয়মিত মাসিক অথবা মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত) আসলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে তিন মাস ধরে ব্যথানাশক ঔষধ অথবা উপযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করার পরেও অবস্থার উন্নতি না হলে একজন গাইনী বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেওয়া উচিত তিনি কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিবেন পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে পিরিয়ডের ব্যথার পেছনে কোনো কারণ লুকিয়ে থাকলে সেটি বেরিয়ে আসবে এসব পরীক্ষানিরীক্ষার মধ্যে রয়েছে— প্রস্রাব অথবা রক্ত পরীক্ষা পেলভিক আলট্রাসাউন ল্যাপারোস্কোপি হিস্টেরোস্কো পিরিয়ডের ব্যথা কমানোর মেশিনপিরিয়ডের ব্যথা কমাতে TENS বা Transcutaneous Electrical Nerve Stimulation মেশিন ব্যবহার করা যায় ছোটো আকারের এই মেশিন বৈদ্যুতিক কারেন্ট ব্যবহার করে পিরিয়ডের ব্যথা কমায় গবেষণায় দেখা গেছে এই মেশিনটি High‐frequency সেটিংএ ব্যবহার করলে পিরিয়ডের ব্যথা কমে নিজে বাসায় ব্যবহার করার আগে ফিজিওথেরাপি বা পেইন ক্লিনিক থেকে এটার ব্যবহারবিধি শিখে নিতে হবেজন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিকম্বাইন্ড ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল বা জন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি (যেমন সুখি) একটি জনপ্রিয় জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি তবে এটি পিরিয়ডের ব্যথার চিকিৎসাতেও কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে[এসব পিল বা বড়িতে ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টোজেন নামক হরমোন থাকে এগুলো—প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক কেমিক্যালের নিঃসরণ কমিয়ে দেয় জরায়ুর ভেতরের আস্তরণ পাতলা করেপ্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন জরায়ুর দেয়ালের সংকোচন জোরালো করে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নিঃসরণ কমে আসার ফলে জরায়ুর দেয়ালের সংকোচন কমে এবং ব্যথার তীব্রতা কমে আসেঅন্যদিকে জরায়ুর আস্তরণের পুরুত্ব কমে যাওয়ায় মাসিকের সময়ে জরায়ুর দেয়াল আগের মতো জোরালো সংকোচনের প্রয়োজন হয় না ফলে পিরিয়ডের ব্যথা কমে আসে পাশাপাশি রক্তক্ষরণের পরিমাণও কমে যায়এভাবে জন্মনিরোধক পিল পিরিয়ডের ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারেজন্মনিয়ন্ত্রণের বড়ি আপনার জন্য উপযুক্ত না হলে ডাক্তার আপনাকে বিকল্প হিসেবে কাঠি পদ্ধতি (ইমপ্ল্যান্ট) অথবা জন্মনিয়ন্ত্রক ইনজেকশন ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারেন ক্ষেত্রবিশেষে মিরেনা নামক জরায়ুর কাঠি পদ্ধতি (ইন্ট্রাইউটেরাইন সিস্টেম) ব্যবহারের পরামর্শও দেওয়া হতে পারেঅন্তর্নিহিত রোগের চিকিৎসাঅন্তর্নিহিত কোনো রোগের কারণে পিরিয়ডের ব্যথা হতে পারে এক্ষেত্রে রোগ অনুযায়ী চিকিৎসা পদ্ধতিও ভিন্ন হবে যেমন পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ এর চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের প্রয়োজন হয় আবার ফাইব্রয়েড হলে চিকিৎসার জন্য অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারে প্রজননের সাথে সম্পর্কিত হরমোনগুলোর মাত্রা একটি নির্ধারিত সময়ে হঠাৎ করে কমে যাওয়ার কারণে মাসিক শুরু হয় এসময়ে হরমোনগুলোর প্রভাবে জরায়ুর ভেতরের আস্তরণটি খসে মাসিকের রক্তের সাথে বের হয়ে যায় এই আস্তরণ খসিয়ে ঠিকমতো বের করে দেওয়ার জন্য জরায়ুর দেয়াল জোরালোভাবে সংকুচিত হয়এমন সংকোচনের কারণে জরায়ুর গায়ে থাকা রক্তনালীগুলোও সংকুচিত হয় ফলে সাময়িকভাবে জরায়ুতে রক্ত ও অক্সিজেন সরবরাহ বন্ধ থাকে অক্সিজেনের অভাবে জরায়ু থেকে কিছু রাসায়নিক পদার্থ নিঃসৃত হয় এসব পদার্থের প্রভাবে পিরিয়ডের ব্যথা শুরু হয়ব্যথার সূত্রপাত ঘটানো এসব রাসায়নিকের পাশাপাশি শরীর থেকে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক আরেক ধরনের রাসায়নিক নিঃসৃত হয় প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন জরায়ুর দেয়ালের সংকোচন আরও জোরালো করে ফলে ব্যথার তীব্রতা আরও বেড়ে যায়জেনে রাখা ভালো বিভিন্ন শারীরবৃত্তীয় কারণে জরায়ুতে সংকোচন হয়ে থাকে জরায়ুতে সার্বক্ষণিক মৃদু সংকোচন চলতে থাকে এসব সংকোচন সাধারণত এতটাই মৃদু হয় যে বেশিরভাগ নারীই এসব সংকোচন টের পান না তবে বিভিন্ন কারণে সংকোচনের মাত্রায় ভিন্নতা আসতে পারে এমন ভিন্নতার পেছনে প্রজননের সাথে সম্পর্কিত হরমোনগুলোর মাত্রার ওঠানামা ও গর্ভাবস্থাসহ বিভিন্ন বিষয় কাজ করে থাকে কিন্তু মাসিক চলাকালে জরায়ু থেকে মাসিকের রক্তসহ অন্যান্য দুষিত পদার্থ বের করে দেওয়ার জন্য জরায়ুর দেয়াল জোরালোভাবে সংকুচিত হয় এতে জরায়ুর দেয়াল আঁটসাঁট বা টাইট হয়ে আসে ফলে নারীরা ব্যথা অনুভব করেনউল্লেখ্য কোনো কোনো নারীর ক্ষেত্রে পিরিয়ডের ব্যথা অন্যদের তুলনায় কেন বেশি হয়—এই বিষয়টি এখনও অজানা ধারণা করা হয় কারও কারও ক্ষেত্রে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন বেড়ে যাওয়ার কারণে সংকোচনের তীব্রতা বেড়ে যায় ফলে ব্যথার মাত্রাও বেড়ে যায়যেসব রোগের কারণে পিরিয়ডের ব্যথা হয়কোনো কোনো রোগের কারণে পিরিয়ডের ব্যথা হতে পারে তবে এসব কারণে পিরিয়ডের ব্যথা হওয়ার ঘটনা তুলনামূলক কম যেসব রোগের কারণে পিরিয়ডের ব্যথা হয় সেগুলোর মধ্যে রয়েছে—এন্ডোমেট্রিয়োসিস (Endometriosis) এই রোগে জরায়ুর বাইরে (যেমন ডিম্বনালী অথবা ডিম্বাশয়ে) জরায়ুর ভেতরের আস্তরণের মতো টিস্যু তৈরি হয় মাসিকের সময়ে জরায়ুর বাইরে প্রতিস্থাপিত এসব টিস্যুও খসে যায় এ সময়ে তীব্র ব্যথা হতে পারে ব্যথার পাশাপাশি মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে পারে ফাইব্রয়েড (Fibroid) এগুলো জরায়ুর পেশিস্তর থেকে বেড়ে ওঠা এক ধরনের টিউমার যা জরায়ুর ভেতরে অথবা এর চারিদিকে সৃষ্টি হয় এসব টিউমার সাধারণত ক্যান্সারে রূপ নেয় না ফাইব্রয়েডের কারণে মাসিকের সময়ে পেট ব্যথা ও অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সমস্যা হতে পারে পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (Pelvic Inflammatory Disease) এটি স্ত্রীপ্রজননতন্ত্রের একটি রোগ এতে জরায়ু ডিম্বনালী ও ডিম্বাশয়ে ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশন ঘটে ফলে এসব অঙ্গে গুরুতর প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া সৃষ্টি হয় এডেনোমায়োসিস (Adenomyosis) এই রোগে জরায়ুর ভেতরের আস্তরণের মতো কিছু টিস্যু বা কোষ জরায়ুর দেয়ালেও বেড়ে উঠতে থাকে মাসিকের সময়ে জরায়ুর পাশাপাশি দেয়ালে গড়ে ওঠা এসব কোষ থেকে রক্তক্ষরণ হয় কিন্তু এই রক্ত বাইরে বের হওয়ার কোনো উপায় থাকে না ফলে মাসিকের সময়ে বেশ পেট ব্যথা হয় পাশাপাশি অতিরিক্ত রক্তক্ষরণও হতে পারে৩০–৪৫ বছর বয়সী নারীদের মধ্যে এসব রোগের কারণে পিরিয়ডের ব্যথা সবচেয়ে বেশি দেখা যায়জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির কারণে মাসিককালীন ব্যথাইন্ট্রাইউটেরাইন ডিভাইস বা আইইউডি (IUD) একটি জনপ্রিয় দীর্ঘমেয়াদি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি একে কপারটি বলা হয়ে থাকে এটি তামা ও প্লাস্টিকের তৈরি একটি ছোটো বস্তু জন্মনিয়ন্ত্রণের উদ্দেশ্যে এটি জরায়ুতে প্রবেশ করিয়ে দেওয়া হয়কখনো কখনো এই পদ্ধতি ব্যবহারে পিরিয়ডের ব্যথা হতে পারে বিশেষ করে আইইউডি জরায়ুতে প্রবেশ করানোর প্রথম কয়েক মাস এমন ব্যথা হতে পারেআইইউডির ব্যবহার কিংবা পিরিয়ডের ব্যথার সাথে সম্পর্কিত কোনো রোগের কারণে মাসিকের স্বাভাবিক ধরন অথবা সময়ে পরিবর্তন আসতে পারে যেমন পিরিয়ডের ব্যথা আগের তুলনায় অনেক তীব্র হওয়া অথবা অন্যান্য মাসের তুলনায় বেশিদিন ধরে মাসিক স্থায়ী হওয়াএ ছাড়া নিচের স্বাস্থ্য সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে—অনিয়মিত মাসিক দুই মাসিকের মধ্যবর্তী সময়ে রক্তক্ষরণ যোনিপথে ঘন ও দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব যাওয়া যৌন সহবাসের সময়ে ব্যথা হওয়া বেশিরভাগ মানুষই কখনো না কখনো পেট টান টান হয়ে থাকা পেট ফুলে থাকা কিংবা পেটে অস্বস্তি হওয়ার মতো উপসর্গের মুখোমুখি হন বিশেষ করে একটা লম্বা ছুটি কিংবা উৎসবের পরে অনেকেই এমন অনুভব করে থাকেন এগুলো পেট ফাঁপার লক্ষণ এই লক্ষণগুলোর সাথে সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়ার সম্পর্ক থাকেবেশিরভাগ মানুষই কখনো না কখনো পেট টান টান হয়ে থাকা পেট ফুলে থাকা কিংবা পেটে অস্বস্তি হওয়ার মতো উপসর্গের মুখোমুখি হন বিশেষ করে একটা লম্বা ছুটি কিংবা উৎসবের পরে অনেকেই এমন অনুভব করে থাকেন এগুলো পেট ফাঁপার লক্ষণ এই লক্ষণগুলোর সাথে সাধারণত অনিয়ন্ত্রিত খাওয়াদাওয়ার সম্পর্ক থাকেতবে একটানা পেট ফাঁপার সমস্যা হলে এর পেছনে হজমের কোনো সমস্যা অথবা ব্যক্তির ডায়েট দায়ী থাকতে পারে প্রায়ই পেট ফাঁপা অনুভব করার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে— পায়খানার রাস্তা দিয়ে অতিরিক্ত বায়ু ত্যাগ করা কোষ্ঠকাঠিন্য বাতাস গিলে ফেলা খাওয়ার সময়ে কথা বললে এমন হতে পারে নির্দিষ্ট কোনো খাবার সহ্য না হওয়া সিলিয়াক ডিজিজ ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম দৈনন্দিন অভ্যাসে সহজ কিছু পরিবর্তন এনে পেট ফাঁপা ভাব থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব এই উদ্দেশ্যে যেসব খাবার খেলে বেশি বায়ু হয় সেগুলো খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে আনতে হবে কার্বোনেটেড (বুদবুদ ওঠে এমন) কোমল পানীয়ের বিকল্প বেছে নিতে হবে সময় নিয়ে বসে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে যেসব খাবার খেলে পায়খানার রাস্তা দিয়ে বেশি বায়ু যায় সেগুলো খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দিতে হবে এতে পেট ফাঁপা ভাব কমে আসবে এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে— শিম ও অন্যান্য বিন জাতীয় সবজি (Beans) পেঁয়াজ ব্রকলি ফুলকপি বাঁধাকপি অঙ্কুরিত সবজি বা স্প্রাউট (Sprouts)এই তালিকার সবজিগুলো খাওয়া কমিয়ে দিলেও দৈনিক পর্যাপ্ত পরিমাণে ফল ও অন্যান্য শাকসবজি খাওয়া নিশ্চিত করতে হবেদৈনিক কতটুকু ফল ও শাকসবজি খাবেনশরীর সুস্থ রাখতে এবং বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদী রোগ থেকে বাঁচতে দৈনিক কমপক্ষে পাঁচ পরিবেশন ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ এক্ষেত্রে ৮০ গ্রাম তাজা ফলমূল অথবা শাকসবজিকে এক পরিবেশন ধরা হয় হিসাবের সুবিধার্থে এক হাতের তালুতে যতটুকু তাজা ফলমূল অথবা শাকসবজি আঁটে সেটিকে এক পরিবেশন ধরা যেতে পারে নিচের তিনটি কাজের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা সম্ভব—খাদ্য তালিকায় বেশি বেশি ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার রাখা এমন খাবারের মধ্যে রয়েছে বিভিন্ন ফলমূল শাক সবজি ডাল ও পূর্ণশস্য (যেমন লাল চাল ও লাল আটা) পর্যাপ্ত পানি ও অন্যান্য তরল পান করা এটি ফাইবারের কাজে সহায়তা করে এবং হজমে সাহায্য করে নিয়মিত ব্যায়াম করা সপ্তাহে কেবল চারদিন ২০৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটলেও পেটের কাজ করার ক্ষমতার উন্নতি হবে ফলে হজমের প্রক্রিয়াটি সহজ হয়ে আসবে পায়খানার বেগ আসলে তা চেপে না রাখা পায়খানার বেগ আসলে তা যদি আটকে রাখা হয় তাহলে শরীর ক্রমশ সেখান থেকে পানি শুষে নিতে থাকে পেটের ভেতর পায়খানা জমিয়ে রাখলে সেটা দিন দিন আরও শক্ত হতে থাকে ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় বাতাস গিলে ফেললে পেট ফাঁপা ভাব হতে পারে অতিরিক্ত বাতাস গিলে ফেলা প্রতিরোধ করার জন্য কিছু কাজ করা যায় যেমন—খাওয়ার সময়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকা খাওয়ার সময় মুখ বন্ধ করে চিবিয়ে খাওয়া সোজা হয়ে বসে খাওয়া এবং খাওয়ার সময়ে ঝুঁকে বসা থেকে বিরত থাকা বুদবুদ ওঠা কোমল পানীয় (যেমন কোকসেভেন আপ) খাওয়া কমিয়ে দেওয়া চুইংগাম খাওয়া বন্ধ করা কোনো নির্দিষ্ট খাবার পেটে সহ্য না হলে পেট ফাঁপা ভাব হতে পারে নিচের তিনটি ক্ষেত্রে এ ধরনের পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারে—যদি পায়খানার পরে পেট পুরোপুরি পরিষ্কার না হয় যদি কোনো খাবার পেটে গ্যাস আটকে রাখে যদি কোনো খাবারের প্রতিক্রিয়ায় পেটে অতিরিক্ত গ্যাস তৈরি হয় এসব সমস্যার জন্য দায়ী দুটি প্রধান খাবার হলো—১ গ্লুটেন এটি গম রাই বার্লি ও ক্ষেত্রবিশেষে ওটসে থাকা এক ধরনের প্রোটিন২ দুধ ও দুগ্ধজাত খাবারকোনো নির্দিষ্টই খাবার পেটে সহ্য না হলে যদি খাবারটি খাওয়া কমিয়ে দেওয়া যায় অথবা একেবারেই বাদ দেওয়া যায় তাহলে সবচেয়ে ভালো হয়কয়েক সপ্তাহের জন্য একটি খাবারের ডায়েরি বানতে পারেন সেখানে আপনি কী কী খাচ্ছেন ও পান করছেন সেটি লিখে রাখুন কখন পেট ফাঁপার সমস্যা সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিচ্ছে সেটিও লিখে রাখুন এতে পেটে নির্দিষ্ট কোনো খাবার সহ্য না হলে সেই সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যাবেতবে চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া দীর্ঘ সময়ের জন্য নির্দিষ্ট ধরনের খাবার খাওয়া বন্ধ করে দিবেন না যখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ সবসময় অথবা অনেকদিন ধরে পেট ফাঁপার সমস্যা হলে সেটি কোনো মারাত্মক রোগ—এমনকি ক্যান্সারের লক্ষণ হতে পারে এক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি নারীদের ক্ষেত্রে পেট ফাঁপা এবং সবসময় পেট ভরা মনে হওয়া ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের অন্যতম প্রধান লক্ষণ এসব লক্ষণকে সাধারণ সমস্যা মনে করা হলেও ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারে অনেকসময় কেবল এই লক্ষণগুলোই দেখা যায় তাই নারীদের এ জাতীয় লক্ষণ দেখা দিলে গুরুত্বের সাথে বিবেচনা করতে হবে এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে সিলিয়াক ডিজিজ (Coeliac Disease) পরিপাকতন্ত্রের একটি পরিচিত রোগ এই রোগে গ্লুটেন (Gluten) নামক প্রোটিন হজমে সমস্যা হয় গ্লুটেনযুক্ত কিছু খাদ্য উপাদানের মধ্যে রয়েছে গম বার্লি রাই ও ওটস জাতীয় খাদ্যশস্যসিলিয়াক ডিজিজ থাকলে গ্লুটেনযুক্ত খাবার খাওয়ার পরে পেট ফাঁপার পাশাপাশি ডায়রিয়া পেট ব্যথা ও ক্লান্তি বা শারীরিক অবসাদের মতো লক্ষণও দেখা দিতে পারেসিলিয়াক ডিজিজ আছে সন্দেহ হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে সিলিয়াক ডিজিজের কোনো স্থায়ী নিরাময় নেই তবে রোগটি সনাক্ত হলে খাবারের তালিকা থেকে গ্লুটেনযুক্ত খাবার পুরোপুরি বর্জন করার মাধ্যমে অনেকাংশে উপকার পাওয়া সম্ভব ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম বা আইবিএস (Irritable Bowel Syndrome—IBS) এর রোগীরা প্রায়ই পেট ফাঁপার সমস্যায় ভোগেন বিশেষ করে সন্ধ্যার দিকে এই পেট ফাঁপার সমস্যা বেড়ে যায় গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা লাগা পেট ভরা ভরা লাগা কিংবা পেটে গ্যাস জমেছে বলে মনে হওয়া একটি পরিচিত সমস্যা সাধারণত গর্ভধারণের শুরুর দিকের সময়টায় এই সমস্যা দেখা দেয় এমনকি সন্তান প্রসবের কয়েক সপ্তাহ পর পর্যন্তও পেট ফাঁপার সমস্যা থাকতে পারেগর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা লাগা পেট ভরা ভরা লাগা কিংবা পেটে গ্যাস জমেছে বলে মনে হওয়া একটি পরিচিত সমস্যা সাধারণত গর্ভধারণের শুরুর দিকের সময়টায় এই সমস্যা দেখা দেয় এমনকি সন্তান প্রসবের কয়েক সপ্তাহ পর পর্যন্তও পেট ফাঁপার সমস্যা থাকতে পারে গর্ভধারণের ফলে আপনার দেহে কিছু বিশেষ হরমোনের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায় এমন একটি হরমোন হলো প্রোজেস্টেরন এই হরমোনের প্রভাবে খাবার হজমের সাথে জড়িত পেশিগুলো কিছুটা শিথিল হয়ে আসে এবং হজমের গতি কমে যায়[১] এতে করে আপনার পেটে গ্যাস তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পেট ফাঁপা লাগে অনেকের ক্ষেত্রে এই হরমোনের প্রভাবে বুক জ্বালাপোড়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় এবং সেখান থেকে পেট ফাঁপা লাগেএ ছাড়াও গর্ভের সন্তান বড় হতে থাকলে পরিপাক নালীর ওপর চাপ বাড়তে থাকে চাপ বাড়ার কারণে হজমের গতি কমে আসতে পারে এবং পেট ফাঁপার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়[২]উল্লেখ্য স্বাভাবিক অবস্থায় পেট ফাঁপার কারণগুলোও এসময় আপনার পেট ফাঁপা লাগার পেছনে দায়ী থাকতে পারে যেমন ঠিকমতো চিবিয়ে চিবিয়ে খাবার না খাওয়া খাওয়ার সময়ে কথা বলার কারণে পেটে বাতাস ঢোকা এবং যেসব খাবারে গ্যাস হয় সেগুলো খাওয়াতা ছাড়া আগে থেকেই ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম কিংবা সিলিয়াক ডিজিজের মতো হজমসংক্রান্ত রোগ থাকলে গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা লাগতে পারেগ্যাস নাকি প্রসববেদনা গর্ভকালের শেষের দিকে পেটের ব্যথা গ্যাস থেকে হচ্ছে না কি প্রসববেদনা শুরু হয়েছে—এ নিয়ে অনেক সময় দ্বিধা তৈরি হতে পারে দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য করার সহজ উপায় হলো ব্যথার সময়কাল লক্ষ করা যদি ব্যথা অনিয়মিতভাবে যেকোনো সময় হয় এবং একটানা অনেকক্ষণ থাকে তাহলে সেটা পেট ফাঁপার ব্যথা অপরদিকে প্রসববেদনা কিছু সময়ের জন্য হয়ে চলে যাবে এবং নিয়মিত সময় পর পর ব্যথা হবে ব্যথার ধরন লক্ষ্য করলেও একটা ধারণা পাওয়া যায় পেট ফাঁপার ব্যথা হবে বদহজমের অনুভূতির মতো আর প্রসববেদনা মাসিকের ব্যথার মতো গর্ভকালীন সময়ে অল্প মাত্রায় পেট ফেঁপে যাওয়া সাধারণত বড় রকমের কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না তবে এটা কমানোর জন্য বেশ কিছু উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে—১ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পানি ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়াগর্ভাবস্থায় অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে কোষ্ঠকাঠিন্য গর্ভাবস্থায় পেটে গ্যাস জমার অন্যতম কারণ[৩] কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পরিপাক নালীতে গ্যাস জমে পেট ফেঁপে যেতে পারেকোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রচুর পানি পান করা এবং আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণএকজন সুস্থ নারীর গর্ভাবস্থায় দৈনিক গড়ে ২–৩ লিটার বা ৮–১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত বোতল অথবা স্ট্র দিয়ে পানি না খেয়ে কাপ অথবা গ্লাস দিয়ে পানি পান করবেন কারণ বোতল অথবা স্ট্র দিয়ে পেটে বেশি বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে পেটে বেশি বেশি বাতাস ঢোকার ফলেও পেট ফাঁপা হয়ে থাকেআঁশযুক্ত খাবার খেলে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারবেন এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে সবুজ শাকসবজি মিষ্টিকুমড়া গাজর কলা ও আঙুরখাবারের তালিকায় ফাইবারের পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়াবেন একেবারে অনেক বেশি আঁশযুক্ত খাবার খাবেন না কারণ আঁশযুক্ত খাবার হজম হতে একটু বেশি সময় লাগে খাবার বেশি সময় ধরে পরিপাক নালীতে থাকলে পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারেআঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি দিনে অন্তত ২ লিটার পানি পান করা খুব গুরুত্বপূর্ণবিশেষ তথ্য গর্ভকালীন সময়ে কিছু বাড়তি ভিটামিন ও মিনারেল (যেমন আয়রন) খাওয়ার কারণেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে তবে এজন্য আয়রন ট্যাবলেট সেবন বাদ দেওয়া যাবে না বরং আয়রন ট্যাবলেট সেবনের পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধানে প্রচুর পরিমাণে পানি ও শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন২ যেসব খাবারে গ্যাস হয় সেগুলো এড়িয়ে চলাযেসব খাবারে আপনার গ্যাস হওয়ার প্রবণতা রয়েছে সেগুলো এই সময়ে না খাওয়াই উত্তম একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের খাবার খাওয়ার পরে পেটে গ্যাস হতে পারে তাই আপনার কোন খাবারে পেট ফেঁপে যাচ্ছে সেটি নিবিড়ভাবে লক্ষ করে সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুনকিছু খাবার তুলনামূলকভাবে বেশি গ্যাস তৈরি করে এই তালিকায় রয়েছে—আপেল নাশপাতি আম পেঁয়াজ ফুলকপি বাঁধাকপি ও ব্রকলি বিভিন্ন ধরনের ডাল শিম মটরশুঁটি চাকফি ঝালমসলাযুক্ত খাবার গোটা শস্যজাত ও গমজাত খাবার তেলচর্বিযুক্ত খাবার যা হজম হতে বেশি সময় লাগে সরবিটল অথবা ম্যানিটল (চিনির বিকল্পে ব্যবহৃত কৃত্রিম মিষ্টি অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার) সফট ড্রিংক যেমন পেপসি ফানটা ও কোকাকোলাআপনার যদি গর্ভধারণের আগে থেকেই দুধ পান করার কারণে পেট ফাঁপাসহ হজম সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয় তাহলে গর্ভাবস্থায় দুধ পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে সমস্যাগুলোও বেড়ে যেতে পারে[৪]৩ পেটে বাতাস ঢোকা কমাতে ধীরেসুস্থে খাওয়াখুব দ্রুত খাবার খেলে খাবারের সাথে বেশি পরিমাণে বাতাস পেটে চলে যায় সেই সাথে খাবার ঠিকমতো না চিবিয়ে গিলে ফেললে তা হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং গ্যাসও বেশি তৈরি করে এজন্য—ধীরেসুস্থে খান এতে খাবারের সাথে বাতাস গিলে ফেলার পরিমাণ কমে আসে এবং পেটে বাতাস জমে পেট ফাঁপা হওয়ার সম্ভাবনাও কিছুটা কমে যায় পানি পান করার সময়েও অল্প করে পানি মুখে নিয়ে ঢোক গিলবেন একনাগাড়ে ঢকঢক করে পানি খাবেন নামুখ বন্ধ করে খান খাবার খাওয়ার সময়ে মুখ বন্ধ করে ভালো মতো চিবিয়ে খাবেন এতে করে বাতাস গিলে ফেলার সম্ভাবনাও কমবে এবং হজমেও উপকার হতে পারে এ ছাড়া খাবার খাওয়ার সময়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকলেও খাবারের সাথে বাতাস গিলে ফেলার পরিমাণ কমাতে পারবেনধূমপান এড়িয়ে চলুন ধূমপান করা এবং চুইংগাম চিবানোর সময়েও পেটে বেশি বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা থাকে তাই এগুলো থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন এ ছাড়া ধূমপান করলে গর্ভাবস্থায় নানান জটিলতার সম্ভাবনাও বাড়ে৪ শরীর সচল রেখে হজমে সহায়তা করাব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে সচল রাখা হলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয় এতে পেট ফাঁপা কমে আসে এবং যতটুকু বায়ু স্বাভাবিকভাবে তৈরি হয় তা জমে না থেকে বের হয়ে যায়[৫] গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য হাঁটা একটি মানানসই হালকা ব্যায়াম হতে পারেপাশাপাশি খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে বিছানায় শুয়ে না পড়ে অল্প কিছুক্ষণ হাঁটার অভ্যাস করার চেষ্টা করতে পারেন৫ একেবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে খাওয়াআমরা সাধারণত সারাদিনে তিন বেলা খাবার খেয়ে থাকি তাই অনেকসময় একবারে বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা দেখা যায় এটি এড়াতে সারাদিনের খাবারকে অল্প অল্প করে ছয়টি ভাগে ভাগ করে নিতে পারেনউল্লেখ্য এক বার খাওয়ার পর থেকে পরবর্তী খাবার খাওয়ার সময়ের ব্যবধান যেন খুব বেশি না হয়—সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে চাইলে তিন বেলা পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পাশাপাশি কয়েকবার হালকা নাস্তা খাওয়া যেতে পারে নাস্তা হিসেবে শসা টমেটো অথবা একটি ফল বেছে নিতে পারেনএ ছাড়া রাতের খাবার একটু আগে আগেই খেয়ে নিবেন রাতে খাওয়ার কমপক্ষে তিন ঘন্টা পরে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন এটি পেট ফাঁপাসহ হজমের সমস্যাগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে৬ দুশ্চিন্তামুক্ত থাকাবিভিন্ন দুশ্চিন্তা নিয়ে খাবার খাওয়ার সময়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে যার ফলে দ্রুত খাবার খেতে যেয়ে অতিরিক্ত বাতাস খাবারের সাথে পেটে চলে গিয়ে পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দিতে পারে সাধারণত ঘরোয়া উপদেশগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে পেট ফাঁপার সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে তবে এর পরেও পেট ফাঁপা না কমলে এই লক্ষণ উপশমের ঔষধ খেতে পারেনগর্ভাবস্থায় প্রোজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে হজম প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসে মূলত একারণেই পেট ফাঁপা হয় তাই হজমের সমস্যা হলে অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট জাতীয় ঔষধ খেতে পারেনযদি অ্যান্টাসিড সেবনের পরেও লক্ষণের কোনো উন্নতি না হয় তাহলে এগুলোর পরিবর্তে ওমিপ্রাজল খেয়ে দেখতে পারেন যদি মনে হয় পেট ফাঁপার সমস্যা হয়তো হজমসংক্রান্ত নয় তাহলে সিমেথিকোন নামের একটি ঔষধ খেতে পারেন এটি পেট ফাঁপা উপশমে সাহায্য করতে পারেআয়রন ট্যাবলেট ও অ্যান্টাসিড একই সময়ে খাবেন না এতে আয়রনের কার্যকারিতা কমে যায় অ্যান্টাসিড খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে অথবা ২ ঘণ্টা পরে আয়রন ট্যাবলেট খাবেনউল্লেখ্য অ্যান্টাসিড অ্যালজিনেট ওমিপ্রাজল ও সিমেথিকোন—এগুলো সবই ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনগর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপার যেসব ঔষধ এড়িয়ে চলতে হবে বিসমাথ সাবস্যালিসাইলেট বাইকার্বনেট অফ সোডা অ্যাসপিরিন অ্যাক্টিভেটেড চারকোল এনেমা ও ক্যাস্টর তেল এই ঔষধগুলো গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে তাই এগুলো গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়[১২]কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে যদি পেট ফাঁপার সমস্যা ধীরে ধীরে পেট ব্যথা পেটে টান ধরা বা খিল ধরার রূপ নেয় তখন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত কারণ এরকম ব্যথা গর্ভকালের শুরুতে বদহজম ইনফেকশন অথবা খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকে হতে পারে এমনকি গর্ভকালের শেষের দিকে প্রিএক্লাম্পশিয়া নামক মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকেও হতে পারে আবার আপনার পেটে অস্বস্তি ভাবের কারণ আদৌ পেট ফাঁপা না কি অন্য কিছু—এই নিয়ে মনে সন্দেহ থাকলে নিজে নিজে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয় বেশিরভাগ সময়েই পেট ব্যথা কোন গুরুতর রোগের কারণে হয় না কয়েকদিনের মাঝেই সেরে যায় আমাদের যে বিভিন্ন রকমের পেট ব্যথা হয় এবং সেগুলোর সম্ভাব্য কারণ এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে তবে নিজেই নিজের রোগ নির্ণয় করার চেষ্টা করবেন না ব্যথা নিয়ে চিন্তিত হলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের শরনাপন্ন হবেন আর যে ১১টি সময়ে আপনাকে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে সেগুলো অবশ্যই জেনে নিবেনবেশিরভাগ সময়েই পেট ব্যথা কোন গুরুতর রোগের কারণে হয় না কয়েকদিনের মাঝেই সেরে যায় আমাদের যে বিভিন্ন রকমের পেট ব্যথা হয় এবং সেগুলোর সম্ভাব্য কারণ এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে তবে নিজেই নিজের রোগ নির্ণয় করার চেষ্টা করবেন না ব্যথা নিয়ে চিন্তিত হলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের শরনাপন্ন হবেন আর যে ১১টি সময়ে আপনাকে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে সেগুলো অবশ্যই জেনে নিবেন পেট ব্যথার ধরন সম্ভাব্য কারণ পেট ফাঁপা বোধ করা ও অতিরিক্ত বায়ু ত্যাগ করা আটকে থাকা বায়ু খাওয়ার পর পেট ভরা ভরা বা ফেঁপে আছে এমন মনে হওয়া বুক জ্বালাপোড়া করা এবং বমি বমি লাগা বদহজম পায়খানা না হওয়া কোষ্ঠকাঠিন্য পানির মত তরল পায়খানা হওয়া বমি বমি বোধ করা বমি হওয়া ডায়রিয়া অথবা ফুড পয়জনিং পেট ব্যথার ধরন সম্ভাব্য কারণ পেটের নীচের অংশে ডান দিকে হঠাৎ ব্যথা শুরু হওয়া অ্যাপেন্ডিসাইটিস পেট কামড়ানো পেট ফেঁপে ওঠা পাতলা পায়খানা কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম বা আইবিএস পেট বা পিঠের একপাশে তীব্র ব্যথা হওয়া যা কুঁচকি পর্যন্ত নেমে আসে বমি বমি ভাব হওয়া প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভব করা কিডনিতে পাথর পেটের মাঝামাঝি অংশে বা পাঁজরের ডান পাশের ঠিক নীচে কয়েক ঘন্টা ধরে প্রচণ্ড ব্যথা হওয়া পিত্তথলিতে পাথর পেটের মাঝামাঝি অংশে হঠাৎ তীব্র ব্যথা হওয়া বমি ভাব বা বমি হওয়া গায়ে জ্বর আসা প্যানক্রিয়াটাইটিস মাসিকের সময় পেটে ব্যথা হওয়া বা কামড়ানো মাসিকের ব্যথা বারবার পেট ব্যথা অথবা পেট ফেঁপে ওঠার সমস্যা হতে থাকে পেট ব্যথা বা পেট ফাঁপা দীর্ঘ সময় ধরে থাকে এবং সহজে সারতে চায় না পেট ব্যথার পাশাপাশি খাবার গিলতে সমস্যা হয় খাবার গলায় আটকে যায় কোন কারণ ছাড়াই শরীরের ওজন কমতে থাকে ঘন ঘন বমি হয় পেটে চাকার মত মনে হয় আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতায় ভোগেন হঠাৎ করেই আপনার প্রস্রাব স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশী বার হয় প্রস্রাব করার সময় আপনি ব্যথা অনুভব করেন পায়খানার রাস্তা অথবা যোনিপথ তথা মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্ত যায় অথবা মাসিকের রাস্তা দিয়ে এমন স্রাব যায় যা অস্বাভাবিক ডায়রিয়া কিছুদিনের মধ্যে সেরে না ওঠেডাক্তারকে যেসব বিষয় নিয়ে জিজ্ঞেস করতে পারেন সেগুলো হলপেট ব্যথা হওয়ার সম্ভাব্য কারণ কী করলে ব্যথা কমতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বদহজমের জন্য কোন ওষুধ খাওয়া যেতে পারে পাকস্থলীর আলসার বা গ্যাসট্রিক আলসার হলো পাকস্থলীর ভেতরের আস্তরণে হওয়া এক ধরনের ঘা বা ক্ষত এ ধরনের আলসার পাকস্থলী ছাড়াও পরিপাকতন্ত্রের অন্যান্য জায়গায় হতে পারে যেমন পাকস্থলীর পর থেকে শুরু হওয়া অন্ত্রের প্রথম অংশে এমন ঘা হয় যাকে বলা হয় ডিওডেনাল আলসার ডিওডেনাল আলসার ও পাকস্থলীর আলসার—এই দুই প্রকার আলসারকে অনেক সময় পেপটিক আলসারও বলা হয়পাকস্থলীর আলসার বা গ্যাসট্রিক আলসার হলো পাকস্থলীর ভেতরের আস্তরণে হওয়া এক ধরনের ঘা বা ক্ষত এ ধরনের আলসার পাকস্থলী ছাড়াও পরিপাকতন্ত্রের অন্যান্য জায়গায় হতে পারে যেমন পাকস্থলীর পর থেকে শুরু হওয়া অন্ত্রের প্রথম অংশে এমন ঘা হয় যাকে বলা হয় ডিওডেনাল আলসার ডিওডেনাল আলসার ও পাকস্থলীর আলসার—এই দুই প্রকার আলসারকে অনেক সময় পেপটিক আলসারও বলা হয়এখানে মূলত পেটের আলসার নিয়ে কথা বলা হলেও তথ্যগুলো ডিওডেনাল আলসারের জন্য সমানভাবে কার্যকর পাকস্থলীর আলসারের সবচেয়ে কমন লক্ষণ হলো বিশেষ এক ধরনের ব্যথা পেটের আলসারে পেটের মাঝ বরাবর জ্বালাপোড়া করতে থাকে বা সারাক্ষণ ভোঁতা এক ধরনের ব্যথা হতে থাকে তবে সবার ক্ষেত্রেই যে ব্যথা থাকে তা নয় কারও কারও ক্ষেত্রে অন্যান্য লক্ষণও থাকতে পারে যেমন—বদহজম বুক জ্বালাপোড়া করা বমি বমি ভাবপড়ুন গ্যাসট্রিক আলসারের লক্ষণ কি আপনার যদি পাকস্থলীর আলসারের কোনো লক্ষণ আছে বলে মনে হয় তবে ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন এছাড়া নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন—রক্তবমি হলে বমির সাথে উজ্জ্বল লাল রঙের রক্ত যেতে পারে অথবা খয়েরী রঙের চাকাচাকা বা দানাদার রক্ত মিশ্রিত থাকতে পারে যা দেখতে অনেকটা কফির দানার মতো কালো আঠালো আলকাতরার মতো পায়খানা হলে পেটে হঠাৎ করে তীব্র ও তীক্ষ্ণ ব্যথা হলে যা সময়ের সাথে ক্রমশ বাড়তে থাকে এসব লক্ষণ শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ (Internal Bleeding) এর মতো কোনো মারাত্মক জটিলতার কারণে দেখা দিতে পারে তাই দেরি না করে দ্রুত হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন গ্যাসট্রিক আলসার রোগ নির্ণয় করার উপায় পাকস্থলীর আস্তরণকে পেটের ভেতরে তৈরি হওয়া এসিডের সংস্পর্শ থেকে রক্ষা করার জন্য এদের মাঝে একটি প্রলেপ থাকে প্রলেপটি মূলত মিউকাস নামের শ্লেষ্মার মতো পদার্থ দিয়ে তৈরি একটি স্তর কোনো কারণে এই স্তরটি ক্ষতিগ্রস্ত হলে এসিড সরাসরি পাকস্থলীর আস্তরণের সংস্পর্শে এসে একে ক্ষতিগ্রস্ত করে এভাবে পেটের আলসার তৈরি হয়প্রলেপটি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কারণের মধ্যে রয়েছে— হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি (H pylori) নামক ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ আইবুপ্রোফেন ন্যাপ্রক্সেন এসিক্লোফেনাক বা অ্যাসপিরিনের মতো নন স্টেরয়ডাল অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস বা NSAIDs গ্রুপের ঔষধ বহুদিন ধরে বা উচ্চ ডোজে সেবন আগে ধারণা করা হতো যে মানসিক চাপ থেকে কিংবা নির্দিষ্ট কিছু খাবার খাওয়ার ফলে পাকস্থলীতে আলসার হয়ে থাকে কিন্তু এগুলোর পক্ষে কোনো অকাট্য প্রমাণ মেলেনি পড়ুন গ্যাসট্রিক আলসারের কারণ পেটের আলসার বেশ কমন একটি রোগ যা শিশু থেকে শুরু করে যেকোনো বয়সের মানুষেরই পারে সাধারণত ৬০ বছর বা তদূর্ধ্ব বয়সীদের ক্ষেত্রে রোগটি বেশি দেখা যায় নারীদের চেয়ে পুরুষেরা সাধারণত পাকস্থলীর আলসারে বেশি আক্রান্ত হয় সঠিক চিকিৎসা পেলে অধিকাংশ পেটের আলসারই এক থেকে দুই মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ সেরে ওঠে কোন রোগীকে কী চিকিৎসা দেওয়া হবে তা সাধারণত নির্ভর করে কী কারণে আলসার হয়েছে তার ওপর পাকস্থলীর আলসারের চিকিৎসায় সাধারণত নিচের পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা হয়—১ বেশিরভাগ মানুষের চিকিৎসায় প্রথমে প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (PPI) গ্রুপের ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয় এগুলোকে আমরা সাধারণত গ্যাস্ট্রিকের ঔষধ হিসেবে চিনি PPI পাকস্থলী হতে গ্যাস্ট্রিক এসিডের নিঃসরণ কমিয়ে দেয় ফলে আলসার বা ক্ষতস্থানটি নিজে নিজে সেরে ওঠে২ হেলিকোব্যাকটার পাইলোরি (H pylori) ব্যাকটেরিয়া দ্বারা ইনফেকশনের কারণে আলসার হয়ে থাকলে PPI এর পাশাপাশি অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দেয়া হয় অ্যান্টিবায়োটিক এই ব্যাকটেরিয়াগুলোকে মেরে ফেলার মাধ্যমে বার বার আলসার হওয়া প্রতিরোধ করে৩ নন স্টেরয়ডাল অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস বা NSAIDs গ্রুপের ঔষধ সেবনের ফলে আলসার হলে সেক্ষেত্রেও PPI সেবন করতে হয় সেই সাথে আপনি NSAIDs জাতীয় ঔষধ সেবন চালিয়ে যাবেন কি না সেই বিষয়েও ডাক্তার আপনার সাথে কথা বলে সিদ্ধান্ত নিবেন প্রয়োজনে এসব ঔষধের পরিবর্তে প্যারাসিটামলের মতো ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেওয়া হতে পারেচিকিৎসা নিয়ে সেরে ওঠার পরেও পাকস্থলীতে আবার আলসার হতে পারে তবে যে কারণে আলসার হয়েছিলো তা নির্মূল করা সম্ভব হলে সাধারণত পরবর্তীতে আলসারের সমস্যা আর ফিরে আসে নাপড়ুন গ্যাসট্রিক আলসারের চিকিৎসা পাকস্থলীর আলসারে সাধারণত বিশেষ জটিলতা দেখা যায় না তবে কিছু ক্ষেত্রে এসব জটিলতা মারাত্মক রূপ ধারণ করতে পারে এই জটিলতাগুলো এতটা গুরুতর যে এগুলো থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারেপেটের আলসারের প্রধান জটিলতাগুলোর মধ্যে রয়েছে—আলসার বা ক্ষতস্থান থেকে রক্তক্ষরণ হওয়া আলসারের জায়গাটিতে পাকস্থলীর আস্তরণ ফুটো হয়ে যাওয়া—একে ডাক্তারি ভাষায় পারফোরেশন (Perforation) বলে আলসারের কারণে পরিপাকনালীর ভেতর দিয়ে খাবারের চলাচল বন্ধ হয়ে যাওয়া—একে বলা হয় গ্যাস্ট্রিক অবস্ট্রাকশন গর্ভাবস্থার শেষ অর্ধেক সময়ে (সাধারণত ২০ সপ্তাহ বা পর থেকে) অথবা সন্তান জন্মের কিছু সময় পরে কিছু কিছু নারীর প্রিএক্লাম্পসিয়া দেখা দেয় ২০ সপ্তাহের আগে প্রিএক্লাম্পসিয়ার ঘটনা খুব বিরল বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ২৮ থেকে ২৬ সপ্তাহের পরে ও সাধারণত গর্ভাবস্থার একেবারে শেষের দিকে এই সমস্যা দেখা দেয়গর্ভাবস্থার শেষ অর্ধেক সময়ে (সাধারণত ২০ সপ্তাহ বা পর থেকে) অথবা সন্তান জন্মের কিছু সময় পরে কিছু কিছু নারীর প্রিএক্লাম্পসিয়া দেখা দেয় ২০ সপ্তাহের আগে প্রিএক্লাম্পসিয়ার ঘটনা খুব বিরল বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ২৮ থেকে ২৬ সপ্তাহের পরে ও সাধারণত গর্ভাবস্থার একেবারে শেষের দিকে এই সমস্যা দেখা দেয়সন্তান জন্মের পরে প্রথম ৬ সপ্তাহের মধ্যেও প্রথমবারের মত এই সমস্যা দেখা যেতে পারে যদিও এরকম ঘটনা খুব বেশি দেখা যায় না বেশিরভাগ গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে প্রিএক্লাম্পসিয়ার উপসর্গগুলো বেশ মৃদু হয় তবুও দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া উচিৎ না হলে বিভিন্ন রকম জটিল উপসর্গ বা শারীরিক জটিলতা দেখা দিতে পারে প্রথম দিকে প্রিএক্লাম্পসিয়ার লক্ষণগুলো হলউচ্চ রক্তচাপ প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন অর্থাৎ আমিষ বের হয়ে যাওয়াএই উপসর্গগুলোর কোনটিই আপনি হয়ত বাড়িতে বসে বুঝতে পারবেন না কিন্তু আপনার ডাক্তারের কাছে বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়মিত গর্ভকালীন পরীক্ষা নিরীক্ষার সময় এগুলো ধরা পড়ে যায় গর্ভবতী নারীদের মধ্যে শতকরা ১০ থেকে ১৫ জনই উচ্চ রক্তচাপে ভোগেন তাই কেবল রক্তচাপ বেশি হলেই প্রিএক্লাম্পসিয়া হয়েছে এমন বলা যাবে না কিন্তু উচ্চ রক্তচাপের সাথে প্রস্রাবে প্রোটিন গেলে তা প্রিএক্লাম্পসিয়াকেই নির্দেশ করেআর কি কি উপসর্গ থাকতে পারেগর্ভাবস্থার শেষের দিকে প্রিএক্লাম্পসিয়ার আরও কিছু উপসর্গ দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় যেমনপ্রচন্ড মাথাব্যথা চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টি ঘোলা হয়ে যাওয়া বা চোখের সামনে আলোর ঝলকের মত দেখতে পাওয়া প্রচন্ড বুক জ্বালাপোড়া করাপাঁজরের হাড়ের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথাবমি বমি ভাব বা বমি হওয়াশরীরে পানি জমে যাওয়ার কারণে ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যাওয়াখুব খারাপ বা অসুস্থ অনুভব করাশরীরের বিভিন্ন জায়গা যেমন পায়ের পাতা গোড়ালি মুখ ও হাত হঠাৎ ফুলে যাওয়াপ্রি এক্লাম্পসিয়ার এসব উপসর্গ দেখা দিলে জরুরী ভিত্তিতে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুনসময়মত চিকিৎসা না করালে প্রিএক্লাম্পসিয়ার কারণে কিছু মারাত্মক জটিলতা হতে পারে যেমনখিঁচুনিহেল্প সিনড্রোম (একই সাথে লিভার ও রক্তে সৃষ্ট জটিলতা)স্ট্রোক এসব জটিলতাগুলো বিরল হলেও মা ও অনাগত সন্তানের জন্য এগুলো প্রাণঘাতী হতে পারে প্রিএক্লাম্পসিয়ার সময় অমরা বা গর্ভফুল (যে অঙ্গটি মা ও সন্তানের রক্ত প্রবাহের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে) দিয়ে সন্তানের শরীরে ভালোভাবে রক্ত সরবরাহ না হওয়ার কারণে গর্ভের সন্তান স্বাভাবিকের তুলনায় বেশ ধীরে ধীরে বড় হয়সঠিক নিয়মে বেড়ে ওঠার জন্য আপনার গর্ভের সন্তানের যতটুকু অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান প্রয়োজন তার চেয়ে কম পরিমাণে সরবরাহ হওয়ার কারণে সে ঠিকমত বেড়ে উঠতে পারে নাএমনটি হলে গর্ভাবস্থাকালীন নিয়মিত চেকআপের সময় তা ধরা পড়বে গর্ভবতী নারীদের মধ্যে ৬ এর মৃদু প্রিএক্লাম্পসিয়া হতে পারে আর ১ থেকে ২ ক্ষেত্রে এটি মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে কিছু কিছু কারণে প্রিএক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় যেমনগর্ভবতী হওয়ার আগেই ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ বা কিডনীর রোগ থাকলে আরও কিছু রোগেও প্রিএক্লাম্পসিয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় যেমন লুপাস বা এন্টিফসফোলিপিড সিনড্রোম আগে কখনো যদি গর্ভাবস্থায় প্রিএক্লাম্পসিয়া হয়ে থাকেআরও কিছু কারণে আপনার প্রিএক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি সামান্য বেশি থাকতে পারেপরিবারে আপনার মা অথবা বোনের কারো যদি এ সমস্যা হয়ে থাকেআপনার বয়স যদি ৪০ এর বেশি হয়এই বারের গর্ভাবস্থা এবং এর আগের গর্ভাবস্থার মধ্যে যদি কমপক্ষে ১০ বছর সময় পার হয়ে যায়যমজ অর্থাৎ গর্ভে যদি একইসাথে দুই (বা এর বেশি) সন্তান থাকেআপনার বিএমআই যদি ৩৫ বা তার বেশি হয়আপনার যদি এগুলোর মধ্যে ২টি বা তার বেশি উপসর্গ একসাথে থাকে তাহলে ঝুঁকি আরও বেড়ে যায়যদি প্রিএক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে তাহলে ডাক্তার আপনাকে গর্ভাবস্থার ১২ সপ্তাহ থেকে সন্তানের জন্ম হওয়া পর্যন্ত কম ডোজের এসপিরিন নেয়ার পরামর্শ দিতে পারেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনভাবেই এই ওষুধ খাওয়া যাবেনা যদিও প্রিএক্লাম্পসিয়ার সঠিক কারণ জানা নেই মনে করা হয় অমরা বা গর্ভফুলের (যে অঙ্গটি মা ও সন্তানের রক্ত প্রবাহের মধ্যে সংযোগ স্থাপন করে) সমস্যা হলে প্রিএক্লাম্পসিয়া হতে পারে প্রিএক্লাম্পসিয়া শনাক্ত হলে আপনাকে দ্রুত একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শে চিকিৎসা নিতে হবে অবস্থা বেশি মারাত্মক মনে হলে তিনি আপনাকে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পরামর্শ দেবেন হাসপাতালে থাকা অবস্থায় আপনাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করে আপনার অবস্থা কতটুকু মারাত্মক ও আপনাকে কতদিন হাসপাতালে থাকতে হবে সেই ব্যাপারে আপনার চিকিৎসক সিদ্ধান্ত নেবেনসাধারণত সন্তান প্রসবের পর পরই প্রিএক্লাম্পসিয়া ভালো হয়ে যায় তাই যতক্ষণ পর্যন্ত নিরাপদে সন্তান প্রসব করানো সম্ভব হচ্ছে না ততক্ষণ পর্যন্ত আপনাকে পর্যবেক্ষণে রাখা হবে সাধারণত গর্ভাবস্থার ৩৭ থেকে ৩৮ সপ্তাহের মধ্যে নিরাপদে সন্তান প্রসব করানো যায় কিন্তু অবস্থা মারাত্মক হয়ে গেলে আরও আগে কৃত্রিমভাবে বা ওষুধ প্রয়োগের মাধ্যমে আপনার প্রসব করানোর চেষ্টা করা হতে পারে অথবা অপারেশন বা সিজারিয়ান সেকশন ও করা হতে পারেপ্রসবের আগ পর্যন্ত রক্তচাপ কমানোর জন্য আপনাকে ওষুধ দেয়া হতে পারে যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রিএক্লাম্পসিয়া হলে তেমন কোন সমস্যা হয় না ও সন্তান জন্মের পর এ অবস্থা ভালো হয়ে যায় তারপরও মা ও শিশুর কিছু জটিলতার ঝুঁকি থেকেই যায় ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া একটি পরিচিত পেটের সমস্যা অসাবধানতাবশত কোনো কারণে আমাদের খাবারে জীবাণু আক্রমণ করলে সেই খাবার খাওয়ার পরে যেই অসুস্থতা দেখা দেয় তাকেই বলে ফুড পয়জনিং৷ এটি সাধারণত খুব একটা মারাত্মক হয় না সচরাচর এক সপ্তাহের মধ্যেই ভাল হয়ে যায় শিশু অথবা বয়স্ক যেই এতে আক্রান্ত হোক না কেনো ফুড পয়জনিং এর চিকিৎসা সাধারণত বাড়িতেই করা যায়ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া একটি পরিচিত পেটের সমস্যা অসাবধানতাবশত কোনো কারণে আমাদের খাবারে জীবাণু আক্রমণ করলে সেই খাবার খাওয়ার পরে যেই অসুস্থতা দেখা দেয় তাকেই বলে ফুড পয়জনিং৷ এটি সাধারণত খুব একটা মারাত্মক হয় না সচরাচর এক সপ্তাহের মধ্যেই ভাল হয়ে যায় শিশু অথবা বয়স্ক যেই এতে আক্রান্ত হোক না কেনো ফুড পয়জনিং এর চিকিৎসা সাধারণত বাড়িতেই করা যায় খাদ্যে বিষক্রিয়ার কিছু লক্ষণ হলো—বমি বমি ভাব বা বমি পাতলা পায়খানা / ডায়রিয়া পেট কামড়ানো শরীরের তাপমাত্রা ৩৮° সেলসিয়াস/১০০৪° ফারেনহাইট বা তার বেশি হওয়া অসুস্থ বোধ করা যেমন ক্লান্তি গায়ে ব্যথা অথবা গায়ে কাঁপুনি ওঠাযে খাবারের কারণে খাদ্যে বিষক্রিয়া ঘটেছে তা খাওয়ার কয়েকদিনের মধ্যেই সাধারণত এসব লক্ষণগুলো দেখা দেয় তবে এর ব্যতিক্রম ও ঘটতে পারে যেমন কিছু কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো কয়েক ঘণ্টার মধ্যে শুরু হয়ে যায় আবার কিছু ক্ষেত্রে লক্ষণ প্রকাশ পেতে কয়েক সপ্তাহও লাগতে পারে যেকোনো জীবাণুযুক্ত খাবার খেলেই খাদ্যে বিষক্রিয়া হতে পারে বিশেষত খাবারটি যদি—যথেষ্ট তাপ দিয়ে রান্না বা গরম করা না হয় সঠিক উপায়ে সংরক্ষণ করা না হয় যেমন যে খাবারটি ঠান্ডা করে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন তা যদি ফ্রিজে না রাখা হয় দীর্ঘসময় ধরে অসংরক্ষিত বা খোলা অবস্থায় ফেলে রাখা হয়খাবার তৈরি ও পরিবেশনের সাথে জড়িত কেউ যদি অসুস্থ থাকে অথবা ঠিকমতো হাত না ধুয়ে তৈরি বা পরিবেশনে অংশগ্রহণ করেখাবারটি যদি বাসি পঁচা বা মেয়াদোত্তীর্ণ হয় খাদ্যে বিষক্রিয়ার চিকিৎসা সাধারণত ঘরে থেকে নিজে নিজেই করা যায় এর জন্য সাধারণত ডাক্তার দেখানো অথবা হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না৷ খাদ্যে বিষক্রিয়ার লক্ষণগুলো এক সপ্তাহের মধ্যেই আপনাআপনি সেরে যায় ডায়রিয়া সাধারণত ৩ দিনের মধ্যেই সেরে যায় বা কমে আসেফুড পয়জনিং এর ঘরোয়া চিকিৎসাফুড পয়জনিং হলে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ব্যাপার টি খেয়াল রাখতে হয় তা হল পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করা যেহেতু পায়খানা বা বমির সাথে শরীর থেকে অনেকটা পানি চলে যায় তাই এ সময়ে প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরলজাতীয় খাবার শরবত ফলের জুস খেতে হবে প্রয়োজনে খাবার স্যালাইন পান করতে হবেকখন দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে খাদ্যে বিষক্রিয়ার সাথে নিচের লক্ষণগুলো উপস্থিত থাকলে দেরি না করে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে— পায়খানার সাথে রক্ত গেলে অনেক বেশি জ্বর থাকলে (জিহ্বার নিচে থার্মোমিটার দিয়ে মেপে তাপমাত্রা ১০২° ফারেনহাইটের বেশি পেলে)খুব ঘন ঘন বমি হয়ে শরীর থেকে দ্রুত পানি হারাতে থাকলে পানিশূন্যতার লক্ষণগুলো দেখা দিলে যেমন প্রস্রাবের পরিমাণ খুব কমে যাওয়া বা একেবারেই বন্ধ হয়ে যাওয়া মুখ ও গলা শুকিয়ে আসা দাঁড়ালে মাথা ঘুরানো ইত্যাদি৩ দিনের বেশি ডায়রিয়া থাকলে খাদ্যে বিষক্রিয়ার সম্ভাবনা এড়াতে কার্যকর এমন ১০টি উপায় এখানে আলোচনা করা হলো—১ নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস গড়ে তোলা নিয়মিত হাত ধোয়ার অভ্যাস করতে হবে সাবান ও পানি দিয়ে পরিষ্কার ভাবে হাত ধুয়ে এরপর ঠিকমতো শুকিয়ে নিতে হবে কিছু ক্ষেত্রে হাত ধোয়ার কথা একেবারেই ভুলা যাবে না—খাবার তৈরি বা পরিবেশনের আগে খাবার খাওয়ার আগেকাঁচা খাবার ধরার পর যেমন কাঁচা মাংস মাছ ডিম বা শাকসবজি ডাস্টবিন বা ময়লার বালতি হাত দিয়ে ধরলেটয়লেট ব্যবহারের পরে হাত বা টিস্যু দিয়ে নাক ঝাড়ার পরে কুকুর বিড়াল বা অন্যকোন পশুপাখি হাত দিয়ে ধরার পরে ২ রান্নার জায়গা ও বাসনকোসন সবসময় পরিষ্কার রাখা কাটাবাছার জায়গা রান্নার জায়গা ছুরি বটি ও রান্নার কাজে ব্যবহৃত বাসনকোসন সবসময় পরিষ্কার রাখতে হবে খাবার তৈরি করার আগে ও পরে বিশেষ করে যদি কাঁচা মাংস মাছ ডিম বা সবজির সংস্পর্শে আসে সেক্ষেত্রে এসব ভালোমতো পরিষ্কার করে নিতে হবে পরিষ্কার করার জন্য সাবান ও গরম পানিই যথেষ্ট এর জন্য জীবাণুনাশক স্প্রে ধরনের কিছু ব্যবহারের কোনো প্রয়োজন নেই ৩ বাসন মোছার ন্যাকড়া বা কাপড় নিয়মিত ধোয়া বা পরিষ্কার করা বাসন মোছার কাজে ব্যবহৃত ন্যাকড়া কাপড় ও ছোট তোয়ালেগুলো প্রতিদিনের কাজ শেষে ধুয়ে দিতে হবে এবং পুনরায় ব্যবহারের আগে ঠিকমতো শুকিয়ে নিতে হবে কারণ ময়লা ভেজা কাপড় জীবাণু ছড়ানোর আদর্শ স্থান৪ আলাদা আলাদা কাটিং বোর্ড ব্যবহার বা পৃথক স্থানে কাটার ব্যবস্থা করা কাঁচা খাবার (যেমন কাঁচা মাংস ও মাছ) কাটার জন্য আলাদা আলাদা কাটিং বোর্ড ব্যবহার করতে হবে এর মাধ্যমে এক খাবারে উপস্থিত জীবাণু অন্যান্য খাবারে ছড়িয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কম থাকবে আলাদা আলাদা কাটিং বোর্ড ব্যবহার সম্ভব না হলে প্রতিবার ব্যবহারের পর কাটিং বোর্ড অথবা কাটাকুটির জায়গাটি পরিষ্কার করে নিতে হবে যাতে কোন জীবাণু থেকে না যায় ৫ কাঁচা মাছমাংস আলাদাভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করা সালাদ ফল পাউরুটি ইত্যাদি যেসব খাবার রান্নার প্রয়োজন হয় না সেগুলো সবসময় এমনভাবে সংরক্ষণ করতে হবে যাতে কাঁচা খাবার (যেমন কাঁচা মাংসমাছ) এর সংস্পর্শে না আসে কারণ এগুলো যেহেতু রান্না করতে হয় না তাই কাঁচা মাছমাংস থেকে কোন ধরণের জীবাণু এতে প্রবেশ করলে তা সাধারণত আর মরবে না ৬ কাঁচা মাছমাংস ফ্রিজের নিচের তাকে রাখা কাঁচা মাছমাংস সবসময় ফ্রিজের নিচের তাকে রাখা ভালো যাতে এগুলো বাকি খাবারের সংস্পর্শে না আসে বা এই তাক থেকে রক্ত বা পানি কোন কিছু গড়িয়ে অন্যান্য খাবারের গায়ে না পড়ে ৭ পর্যাপ্ত উত্তাপ দিয়ে ভালোমতো রান্না করা কাঁচা মাছ মাংস সসেজ কাবাব এসব চুলায় বা উনুনে ততক্ষণ পর্যন্ত রান্না করতে হবে যতক্ষণ না পর্যন্ত ভাপ বেরুচ্ছে সেই সাথে নিশ্চিত কর‍তে হবে যে মাংস পুরোপুরি রান্না হয়েছে ভেতরের অংশ যেন গোলাপি (অর্থাৎ কাঁচা) না থেকে যায় তা খেয়াল রাখতে হবে রান্নার আগে মাছমাংস ধোয়ার সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে যাতে এসব থেকে পুরো রান্নাঘরে জীবাণু ছড়িয়ে না পড়ে কাঁচা মাংস ফ্রিজে রাখলে এতে উপস্থিত ক্যাম্পাইলোবাক্টার নামক ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার পরিমাণ কিছুটা কমে কিন্তু সম্পূর্ণভাবে কমে না মাংসে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি সম্পূর্ণভাবে দূর করার জন্য রান্নাই সবচেয়ে নিরাপদ উপায়৮ ফ্রিজের তাপমাত্রা ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর নিচে রাখা ফ্রিজের তাপমাত্রা সবসময় ৫ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর নিচে রাখা উচিত কারণ এই নিম্ন তাপমাত্রায় জীবাণু বাঁচতে বা সংখ্যাবৃদ্ধি করতে পারে না সাধারণত অটোমেটিক ফ্রিজগুলোতে তাপমাত্রা এভাবেই নিয়ন্ত্রণ করা থাকে৷ ফ্রিজে একসাথে অনেক কিছু রাখার ফলে যদি পুরো ফ্রিজ ভরে যায় বাতাস চলাচলের মত জায়গা না থাকে তবে এর ফলে তাপমাত্রা বেড়ে গিয়ে ফ্রিজিং এ ব্যাঘাত ঘটতে পারে তাই ফ্রিজে অতিরিক্ত জিনিস একসাথে রাখা পরিহার করতে হবে৷ এছাড়া প্রয়োজন ব্যতীত ফ্রিজের দরজা যেন খোলা রাখা না হয়—সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে ৯ অতিরিক্ত খাবারটুকু যত দ্রুত সম্ভব ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দেওয়া অনেক সময়ে বেশি পরিমাণে খাবার একসাথে রান্না করে কিছু পরিমাণ সাথে সাথে খাওয়া হয় আর বাকিটা পরের বেলায় খাওয়ার জন্য রেখে দেওয়া হয় এমনক্ষেত্রে এই অতিরিক্ত খাবারটুকু রান্নার পর যত দ্রুত সম্ভব (সর্বোচ্চ ৯০ মিনিট বা দেড় ঘন্টার মধ্যে) ঠান্ডা করে ফ্রিজে রেখে দেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে ফ্রিজে রাখা এসব খাবার দুইদিনের মধ্যেই খেয়ে ফেলা উচিত এবং বারবার গরম করা উচিত না ১০ মেয়াদোত্তীর্ণ খাবার না খাওয়া যেকোনো খাবার বিশেষ করে পাউরুটি প্যাকেটজাত দুধ ইত্যাদি যেসব খাবারের গায়ে উৎপাদন ও মেয়াদ উত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ লেখা থাকে তা খাওয়ার আগে অবশ্যই তারিখগুলো দেখে নিতে হবে মেয়াদোত্তীর্ণ হয়ে গেছে এমন কোনো কিছু কোনো অবস্থাতেই খাওয়া উচিত নয় মেয়াদোত্তীর্ণ হয়েছে কিন্তু খাবারটি দেখে বা ঘ্রাণ নিয়ে মনে হচ্ছে যে এখনো নষ্ট হয়নি—এমনটা মনে হলেও খাবারটি খাওয়া যাবে না কারণ এই মেয়াদের তারিখ সাধারণত নানান পরীক্ষা নিরীক্ষা করে নির্ধারণ করা হয়৷ পরীক্ষায় দেখা হয় যে এই খাবারটিতে জীবাণু আক্রমণ করতে ঠিক কতদিন সময় লাগতে পারে তাই দেখে বুঝা না গেলেও মেয়াদোত্তীর্ণ খাবারে প্রকৃতপক্ষে জীবাণু আক্রমণ ও বংশবৃদ্ধি করতে শুরু করে দেয় অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ফুড পয়জনিং বা খাদ্যে বিষক্রিয়া একটি মৃদু অসুখ হিসেবে দেখা দেয় যা কয়েক ঘন্টা থেকে কয়েক দিনের মধ্যেই সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায় তবে কারো কারো ক্ষেত্রে খাদ্যে বিষক্রিয়ার জন্য হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় আবার অনেকের দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা দেখা দেয়—এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে বেশিরভাগ মানুষেরই কখনো না কখনো বদহজমের সমস্যা হয় এটি সাধারণত মারাত্মক কোন কিছুর লক্ষণ নয় আপনি নিজে নিজেই এর চিকিৎসা করতে পারেনবেশিরভাগ মানুষেরই কখনো না কখনো বদহজমের সমস্যা হয় এটি সাধারণত মারাত্মক কোন কিছুর লক্ষণ নয় আপনি নিজে নিজেই এর চিকিৎসা করতে পারেন খাবার খাওয়া বা পানীয় পান করার পরে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে বুক জ্বালাপোড়া করা বিশেষত খাওয়ার পরে বুকে জ্বালাপোড়ার মত যন্ত্রণা অনুভব করা পেট ভরা বা ফুলে উঠেছে এমন বোধ করা বমিভাব ঢেঁকুর তোলা এবং বায়ু ত্যাগ করা খাবার বা তিক্ত স্বাদের তরল মুখে উঠে আসা পেট ব্যথা বা পিঠ ব্যথা সাধারণত বদহজমের লক্ষণ নয় এগুলো থাকলে আপনি হয়তো কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগছেন বুক জ্বালাপোড়া আর এসিড রিফ্লাক্স একই জিনিস পাকস্থলীর ভেতরে থাকা এসিড গলা পর্যন্ত উঠে আসা এরকম ঘটলে আপনি জ্বালাপোড়া অনুভব করবেন এটি বদহজমের লক্ষণ হতে পারে ঘুমাতে যাওয়ার ৩ থেকে ৪ ঘণ্টা আগে কিছু খাবেন না বিছানায় শোবার সময় আপনার মাথা ও ঘাড় উঁচু অবস্থানে রাখুন এটি ঘুমের সময় পাকস্থলীর এসিড গলা পর্যন্ত উঠে আসা বন্ধ করতে পারে তৈলাক্ত চর্বিযুক্ত অথবা অতিরিক্ত মসলাযুক্ত খাবার পরিহার করবেন চা কফি কোমল পানীয় (কোলা) অথবা মদ পান কমিয়ে ফেলুন বদহজমের সাথে যে বুক জ্বালাপোড়া বা ব্যথা হয় তা উপশমের জন্য একজন ডাক্তার আপনাকে ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন যেসব ওষুধ পেটে এসিডের পরিমাণ কমায় সেগুলো হলএন্টাসিড (antacid) প্রোটন পাম্প ইনহিবিটর (proton pump inhibitor)কিছু বদহজমের ওষুধ খাবার খাওয়ার পরে সেবন করা ভালো যাতে তাদের কার্যকারিতা দীর্ঘস্থায়ী হয় গর্ভবতী মহিলাদের প্রায়ই বদহজমের সমস্যা হয় গর্ভধারণের ২৭ সপ্তাহের পরে এই সমস্যা খুবই স্বাভাবিক হরমোনের পরিবর্তনের জন্য বা গর্ভে বেড়ে ওঠা শিশু পেটে চাপ দেওয়ার কারণে এটি হতে পারে একজন ডাক্তার অস্বস্তিকর অনুভুতি বা ব্যথার ব্যাপারে সাহায্য করতে পারেন তারা গর্ভাবস্থায় খাওয়ার জন্য সঠিক ওষুধটি খাওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন বার বার বদহজমের সমস্যায় ভুগতে থাকেন তীব্র ব্যথা অনুভব করেন ৫৫ বছর বা তার বেশি বয়সী হয়ে থাকে কোন চেষ্টা ছাড়াই ওজন অনেক কমে যায় খাবার গিলতে সমস্যা অনুভব করেন বার বার বমি করেন আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা এর রোগী হন পেটে চাকার মত কিছু অনুভব করেন বমি বা পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়ার সমস্যায় ভোগেন এগুলো মারাত্মক কোন সমস্যার লক্ষণ হতে পারে পাকস্থলীতে থাকা এসিড আপনার পাকস্থলীর আস্তরণ কিংবা গলায় জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে একারণে বদহজম হয় এবং আপনি জ্বালাপোড়া ও ব্যথা অনুভব করেন বদহজমের আরও কিছু কারণ হল বিভিন্ন ওষুধ ধূমপান মদ পান এক ধরনের ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ যার নাম( Helicobacter pylori) মানসিক চাপ বদহজমের সমস্যা বাড়ায় বিভিন্ন কারণে বমি বমি ভাব বা পেটে অস্বস্তি হতে পারে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করে বমি বমি ভাব দূর করার যায়বিভিন্ন কারণে বমি বমি ভাব বা পেটে অস্বস্তি হতে পারে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করে বমি বমি ভাব দূর করার যায় বমি বমি ভাবের সাথে অন্য কোনো উপসর্গ থাকলে সেগুলো দেখে বমি বমি ভাবের কারণ সম্পর্কে ধারণা করা যায় তবে কখনো কখনো অন্য কোনো উপসর্গ ছাড়াই শুধু বমি বমি ভাব থাকতে পারেবমি বমি ভাবের সাথে থাকতে পারে এমন অন্যান্য কিছু লক্ষণ এবং এদের সম্ভাব্য কারণ এখানে তুলে ধরা হলো—বমি বমি ভাবের সাথে অন্য লক্ষণ সম্ভাব্য কারণ ডায়রিয়া বা বমি ফুড পয়জনিংমাথাব্যথা ও জ্বর ফ্লু বা এ জাতীয় কোনো ইনফেকশন খাওয়ার পর বুক জ্বালাপোড়া করা অথবা পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দেওয়া এসিড রিফ্লাক্স (পাকস্থলীর এসিড খাদ্যনালী দিয়ে উপরে উঠা আসা) যাকে গ্যাসের সমস্যা বলা হয় মাথাব্যথা এবং তীব্র আলো ও শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা মাইগ্রেন মাথা ঘুরানো লেবিরিন্থাইটিস বা ভার্টিগোঅন্যান্য যেসব কারণে বমি বমি ভাব হয়গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস হলে বমিবমি ভাব দেখা দেয় মোশন সিকনেস এর কারণে চলন্ত গাড়িতে থাকা অবস্থায় বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে দুশ্চিন্তাগ্রস্ত অবস্থায় অনেক সময় এমনটা হতে পারে মদ্যপান করলে বমি বমি ভাব হতে পারে অনেকের ঔষধ সেবনের পরে বমি ভাব দেখা দেয় সম্প্রতি সার্জারি হয়েছে এমন রোগীদের অনেক সময় বমি বমি ভাব বোধ হতে পারেঠিক কী কারণে বমি বমি ভাব হচ্ছে তা বুঝতে না পারলে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই যেসব উপায় অবলম্বন করলে সাধারণত বমি বমি ভাব দূর হয় সেগুলো চেষ্টা করে দেখতে হবে৷ তারপরও ভালো না হলে কিংবা কয়েকদিন পরও বমি বমি ভাব না গেলে ডাক্তার দেখিয়ে নিন৷ বমি বমি ভাব দূর করতে যা যা করতে পারেন—খোলা হাওয়া বা বিশুদ্ধ বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নিতে পারেন অন্য দিকে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন যেমন গান শোনা বই পড়া অথবা কোনো মুভি দেখা এক গ্লাস ঠাণ্ডা পানি নিয়ে তাতে কিছুক্ষণ পরপর চুমুক দিতে পারেন অনেকের ক্ষেত্রে কোক ফান্টা বা এ জাতীয় কোমল পানীয় পান করলে বমি বমি ভাব সেরে যায় আদা বা পুদিনা/পেপারমিন্ট দিয়ে চা খেতে পারেন ভালো পরিমাণে আদা আছে এমন খাবার খেতে পারেন যেমন বাজারে জিনজার বিস্কুট পাওয়া আদার ফ্লেভার যুক্ত কিছু পানীয় ও পাওয়া যায়৷ একসাথে বেশি পরিমাণে খাবার খাওয়া পরিহার করা উচিত এর পরিবর্তে ঘনঘন ও কম পরিমাণে খাবার খাওয়া যেতে পারেযা এড়িয়ে চলতে হবে বমি বমি ভাব হলে খুব তীব্র গন্ধযুক্ত খাবার রান্না করলে বা খেলে বমি ভাব বেড়ে যেতে পারে তাই এগুলো পরিহার করতে হবে খুব গরম ভাজাপোড়া অথবা তেল চুপচুপে খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে খাওয়ার সময় আস্তে ধীরে খাওয়ার অভ্যাস করতে হবে তাড়াহুড়ো করা যাবে না খাওয়ার সাথে বা খাওয়ার পরে খুব বেশি পরিমাণে পানি বা পানীয় পান করা যাবে না খাবার খাওয়া মাত্র শুয়ে পড়া উচিত নয় পেটের দিকে টাইট হয়ে থাকে এমন কাপড় বা টাইট প্যান্ট/পায়জামা পরলে অস্বস্তি থেকে বমিবমি ভাব হতে পারে তাই এই সমস্যা থাকলে এমন কাপড় পরা থেকে বিরত থাকা উচিতবিশেষভাবে লক্ষণীয় যদি বমি বমি ভাবের সাথে বমিও হতে থাকে তবে সাবধান থাকতে হবে কারণ বেশি বমি হলে শরীর থেকে পানি বেরিয়ে গিয়ে আপনি পানিশূন্যতায় আক্রান্ত হতে পারেন পানিশূন্যতা ঠেকাতে বাড়িতে খাবার স্যালাইন বানিয়ে পান করতে পারেনপড়ুন খাবার স্যালাইন বানানোর নিয়ম সাধারণত বমি বমি ভাব বা এজাতীয় সমস্যা কিছু সময়ের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়৷ তবে কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে—কয়েকদিন ধরে এই সমস্যা থাকলে এবং নিজে থেকে সেরে না উঠলে নিয়মিত অথবা ঘন ঘন এমন সমস্যা দেখা দিলেডাক্তার পরীক্ষা নিরীক্ষা করে সমস্যার কারণ চিহ্নিত করবেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিতে পারবেন অনেক সময়ে এর চিকিৎসা হিসেবে বমি নিরোধক ঔষধ সেবন করতে দেওয়া হয় যদি হঠাৎ করে বমি বমি ভাব হয় এবং সেই সাথে—এমন ভাবে বুকে ব্যথা হতে থাকে যাতে মনে হয় যে বুকে কিছু একটা চাপ দিয়ে আছে অথবা বুক ভার হয়ে আছে বুকের ব্যথাটি যদি হাতে পিঠে গলায় ঘাড়ে অথবা চোয়াল পর্যন্ত ছড়াতে থাকে দম বন্ধ হয়ে আসলে অথবা নিঃশ্বাস নিতে কষ্ট হলে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া খুবই পরিচিত একটি সমস্যা অধিকাংশ গর্ভবতী নারীরই এই সমস্যা দেখা দেয়সাধারণত এটি তেমন গুরুতর কোনো সমস্যা নয় কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে সহজেই বমি ভাব ও বমি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভবগর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া খুবই পরিচিত একটি সমস্যা অধিকাংশ গর্ভবতী নারীরই এই সমস্যা দেখা দেয়সাধারণত এটি তেমন গুরুতর কোনো সমস্যা নয় কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে সহজেই বমি ভাব ও বমি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব ও বমি করার প্রবণতাকে ইংরেজিতে মর্নিং সিকনেস বলে নামে মর্নিং বা সকাল থাকলেও আসলে দিনের যেকোনো সময়েই আপনার বমি বমি ভাব হতে পারেসাধারণত গর্ভাবস্থার একদম প্রথম দিকেই (৪ থেকে ৭ সপ্তাহের ভেতর) এই সমস্যা দেখা দেয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে বমি বমি ভাব নিজে থেকেই কমে আসে তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এই সময়ের পরেও—এমনকি পুরো গর্ভকাল জুড়ে বমি বমি ভাব অথবা বমি হতে পারেগর্ভধারণের পর পরই অনেকের বমি বমি ভাব ও বমি দেখা দেয় তাই অনেকে মনে করেন যে এটি হয়তো গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ তবে সব গর্ভবতী নারীরই বমির সমস্যা দেখা দেয় না সেটাও খুব স্বাভাবিক এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই বমি কমানোর ঘরোয়া চিকিৎসাগর্ভাবস্থার বমি বমি ভাব অথবা বমি কমানোর জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই কারণ প্রতিটি গর্ভাবস্থাই একে অপরের থেকে আলাদা তাই একই চিকিৎসায় যে সবার সমস্যা সেরে যাবে ব্যাপারটা তেমন নয় তবে খাদ্যতালিকা ও দৈনন্দিন জীবনে সহজ কিছু পরিবর্তন এনে এই সমস্যা অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় এজন্য—১ আদা‌যুক্ত খাবার খান বিভিন্ন গবেষণায় দেখে গিয়েছে গর্ভাবস্থার বমি ভাব ও বমি কমাতে আদা কার্যকরী ভূমিকা রাখেএমনকি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভকালীন বমি ভাব ও বমি উপশমে আদা একটি ঔষধের (পাইরিডক্সিন বা ভিটামিন বি৬) সমান কার্যকরআপনি কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন সালাদ কিংবা ছোলামাখা খাওয়ার সময়ে পেঁয়াজমরিচের সাথে আদা কুচি মিশিয়ে নিতে পারেন এ ছাড়া গরম পানিতে শুধু আদার কুচি দিয়ে আদা চা বানিয়ে খেতে পারেন২ খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলুন খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ নিয়ম আপনার বমিভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে—খালি পেটে কাজ কর্ম শুরু করলে বমি বমি ভাব হতে পারে তাই ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে হালকা কিছু (যেমন কয়েকটা বিস্কুট অথবা কোনো ফল) খেয়ে নিতে পারেন ১২ ঘন্টা পর পর অল্প পরিমাণে খাবার খেতে পারেন এতে করে পেট খালি থাকার সম্ভাবনা কমে যায় অতিরিক্ত তেলচর্বি যুক্ত কিংবা খুব বেশি মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন অতিরিক্ত মিষ্টি বা টক জাতীয় খাবারও কম খাওয়া ভালো সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন কম তেল ও কম মশলাযুক্ত সহজপাচ্য খাবার আপনার বমি ভাব কমাতে দারুণ উপকারী হতে পারে যেমন ভাত টোস্ট কলা চা ও শুকনো খাবার বেশি বেশি প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রোটিন জাতীয় খাবার পেটে খাবারের চলাচল সহজ করে৷ ফলে বমি কমাতে এটি সাহায্য করতে পারে মাছ মাংস ডিম আর দুধের তৈরি খাবারের পাশাপাশি বাদামও প্রোটিনের ভালো একটি উৎস খাবার খাওয়ার কমপক্ষে আধাঘন্টা আগে ও পরে পানি বা পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন অনেকসময় খাবার খাওয়ার সাথে সাথে পানি খেয়ে নিলে পেট অতিরিক্ত ভরে গিয়ে বমি হতে পারে ঠান্ডা পানি পানীয় কিংবা টক ফলের জুস অনেকসময় বমি ভাব কমাতে সহায়তা করতে পারে খাবার খাওয়ার সাথে সাথে শুয়ে বিশ্রাম নেওয়া থেকে বিরত থাকুন৷ খাওয়ার পরে কিছুক্ষণ হালকা হাঁটাহাঁটি করে নিলে খাবার ভালোভাবে হজম হয়৩ বমি ভাব উদ্রেক করে এমন জিনিস এড়িয়ে চলুন গর্ভধারণ করার পরে অনেকের ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়ে গিয়েছে বলে মনে হতে পারেআপনি যেই গন্ধগুলো হয়তো আগে তেমন বুঝতে পারতেন না কিংবা খেয়াল হতো না সেগুলোও এখন নাকে এসে লাগতে পারে গর্ভাবস্থায় ঘ্রাণশক্তি তীব্র মনে হওয়ার সাথে বমি বমি ভাব বেড়ে যাওয়ার একটি সম্পর্ক থাকতে পারেতাই যেসব গন্ধে অস্বস্তি হয় সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুননির্দিষ্ট কোনো খাবার পারফিউম অথবা কোনো কিছুর গন্ধ খারাপ লাগলে যতটা সম্ভব হয় সেগুলো থেকে দূরে থাকুন বদ্ধ ঘরে রান্না করলে অনেকসময় কাঁচা খাবারের গন্ধ খারাপ লাগতে পারে সেক্ষেত্রে জানালা খুলে রান্না করা যেতে পারে গরম খাবারের গন্ধ অস্বস্তিকর মনে হলে খাবার কিছুটা ঠাণ্ডা করে তারপর খেতে পারেন ময়লা ফেলার ক্ষেত্রে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নিনবিভিন্ন গন্ধের পাশাপাশি তাপ আর্দ্রতা বদ্ধ পরিবেশ মিটমিটে আলো কিংবা বিকট শব্দ আপনার বমি ভাবকে বাড়িয়ে দিতে পারে এসবের মধ্যে যেগুলো আপনার জন্য সমস্যা তৈরি করে সেগুলো এড়িয়ে চলুন৪ বেশি বেশি পানি ও তরল খাবার খান গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়া উচিত এগুলো বমি ভাব কমাতে সাহায্য করতে পারেএকজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেনএ ছাড়া পানি ও তরল খাবার (যেমন ভাতের মাড় ও ওরস্যালাইন) বমির কারণে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া পানির চাহিদা পূরণেও সহায়তা করে পানিশূন্যতা এড়াতে প্রতিবার বমি করার পরে যখনই কিছু খেতে পারবেন তখনই অল্প অল্প করে বারবার তরল খাবার খেতে থাকবেন ফার্মেসি থেকে ওরস্যালাইন কিনে প্যাকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী স্যালাইন বানিয়ে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৫ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন শরীর ক্লান্ত থাকলে বমি বমি লাগার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে তাই পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের ব্যাপারে খেয়াল রাখুন৬ আকুপাংচার থেরাপি অথবা আকুপ্রেশার ব্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন আকুপ্রেশার ব্যান্ড ব্যবহার করে কব্জির একটি নির্দিষ্ট জায়গায় চাপ প্রয়োগ করা হয় আকুপাংচার থেরাপি অথবা আকুপ্রেশার ব্যান্ড ব্যবহার করে অনেকের বমি ভাব কমে আসে বলে কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছেতাই আকুপাংচার করিয়ে দেখতে পারেন তবে আকুপাংচারের কার্যকারিতা এখনো নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত নয় এ নিয়ে আরও গবেষণা করা প্রয়োজনছবি আকুপাংচার থেরাপিবিশেষ তথ্য বমি করার সময়ে পাকস্থলীতে থাকা এসিড বমির সাথে বেরিয়ে যায় গর্ভাবস্থায় প্রায়ই বমি হলে দাঁত বারবার এই এসিডের সংস্পর্শে আসে এতে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে ফলে আপনার দাঁত ও মাড়িতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই প্রতিবার বমি হওয়ার সাথে সাথে পানি দিয়ে ভালো করে কুলি করে নিন এ ছাড়া বমি করার পর পরই দাঁত ব্রাশ না করে অন্তত এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন কেননা বমির পর পর দাঁত একটু দুর্বল থাকে সাথে সাথে ব্রাশ করলে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে সাধারণ পানির পরিবর্তে পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলি করলে সেটা মুখে চলে আসা অ্যাসিডকে নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করতে পারে ঘরেই এই মিশ্রণ তৈরির সহজ উপায় হলো এক কাপ পানিতে এক চামচ বেকিং সোডা গুলিয়ে এই পানি দিয়ে ভালোভাবে কুলি করে নেওয়া এতে দাঁতের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে উপকার পেতে পারেন পড়ুন গর্ভাবস্থায় দাঁতের মাড়ি ফোলা ও রক্ত পড়াবমি ভাব কমানোর ঔষধঘরোয়া পরামর্শগুলো ঠিকমতো মেনে চলার পরেও বমির সমস্যা না কমলে কিছু ঔষধ খেতে পারেন গর্ভাবস্থায় বমি ভাব কমানোর জন্য ভিটামিন বি৬ বা পাইরিডক্সিন ব্যবহার করা হয় এটি গর্ভাবস্থার বমি ভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভকালীন বমি ভাব ও বমি কমাতে এই ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেয়ভিটামিন বি৬ একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ফার্মেসি থেকে কিনে নিরাপদে সেবন করতে পারবেন এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনভিটামিনের পাশাপাশি বমি ভাব কমাতে ডাক্তার আপনাকে ডক্সিলঅ্যামিন নামের একটি ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন এই অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধটি গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয় এটি আলাদাভাবে সেবন করা যায় আবার পাইরিডক্সিন মেশানো অবস্থায় একত্রেও কিনতে পাওয়া যায় তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এটা সেবন করা যাবে নাএসব ঔষধে কাজ না হলে ডাক্তার আপনাকে বমির জন্য নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন ফার্মেসিতে অনেক ধরনের বমির ঔষধ পাওয়া যায়৷ এগুলো সাধারণত ট্যাবলেট হিসেবে সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয় তবে যদি সব ধরনের খাবার ও পানীয় বমি হয়ে যেতে থাকে তাহলে সাপোজিটরি অথবা ইনজেকশন হিসেবেও বমির ঔষধ দেওয়া হতে পারেউল্লেখ্য গর্ভাবস্থার জন্য সব ধরনের বমির ঔষধ নিরাপদ কি না তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি৷ তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের বমির ঔষধ খাওয়া উচিত নয় এতে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে বমির সাথে নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন—রক্তবমি হলে প্রস্রাবের রঙ অনেক গাঢ় হলে অথবা ৮ ঘন্টার বেশি সময়ের মধ্যে প্রস্রাব না হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যা খাচ্ছেন কিংবা পান করছেন তার সবকিছুই বমি হয়ে গেলে শরীর প্রচণ্ড দুর্বল লাগলে মাথা ঘুরালে অথবা দাঁড়ানোর সময়ে অজ্ঞান হয়ে যাবেন এমনটা মনে হলে পেটে ব্যথা থাকলে জ্বর থাকলে মাথাব্যথা থাকলে প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা হলে ওজন কমে গেলেএগুলো পানিশূন্যতা প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন অথবা কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারেডাক্তারের কাছে গেলে তিনি আপনার শারীরিক পরীক্ষা করবেন প্রেসার মেপে দেখবেন এবং কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিবেন যেমন রক্ত পরীক্ষা প্রস্রাব পরীক্ষা ও পেটের আলট্রাসনোগ্রামহাসপাতালে ভর্তি করা হলে আপনাকে শিরায় স্যালাইন দেওয়া হতে পারে সেই সাথে বমির ঔষধ ও অন্যান্য ভিটামিন আপনার শরীরে ইনজেকশন হিসেবে দেওয়া হতে পারে এমন চিকিৎসার পরে অনেকে সুস্থ বোধ করেন এবং দ্রুত বাড়ি ফিরে যেতে পারেনপড়ুন গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাবহাইপারমেসিস গ্রাভিডেরাম কিছু ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার বমি ভাব ও বমির সমস্যা একটি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এই মারাত্মক অবস্থাকে ডাক্তারি ভাষায় হাইপারমেসিস গ্রাভিডেরাম বলা হয় এক্ষেত্রে সারাদিনে অনেকবার বমি হয় গর্ভবতীর খাবারপানি কিছুই পেটে রাখতে পারে না প্রতি ১০০ জন গর্ভবতীর মধ্যে ৩ জনের এমন গুরুতর বমির সমস্যা দেখা দিতে পারে এই জটিলতায় আক্রান্ত হলে আপনি পানিশূন্যতা ও অপুষ্টিতে আক্রান্ত হতে পারেন এমনকি শরীরের ওজন কমে যেতে পারে শরীরে লবণ ক্ষার ও এসিডের ভারসাম্য হারিয়ে নানান মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে এক্ষেত্রে বিশেষায়িত চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে এবং অনেক সময় হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হতে পারে নিচের ক্ষেত্রগুলোতে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়ার ঝুঁকি সাধারণের তুলনায় কিছুটা বেড়ে যেতে পারেযদি আপনার—গর্ভে যমজ অর্থাৎ দুই বা তার বেশি সন্তান থাকেআগের কোনো গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব হয়ে থাকে মোশন সিকনেস থাকে অর্থাৎ গাড়িতে চড়লে বমি বমি ভাব অথবা বমি হয় মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে মাবোন অথবা পরিবারের অন্যদের গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাবের ইতিহাস থাকে গর্ভধারণের আগে ইস্ট্রোজেনযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব হওয়ার ইতিহাস থাকে আপনি প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হয়ে থাকেন ওজন অতিরিক্ত বেশি (বিএমআই ৩০ এর বেশি) হয় কোনো ধরনের মানসিক চাপ অথবা দুশ্চিন্তার ভেতর দিয়ে যেতে হয় গর্ভাবস্থায় ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়ে যায় গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের তারতম্য বমি বমি ভাবের অন্যতম কারণ বলে ধারণা করা হয়এ ছাড়া আরও কিছু অসুখের কারণেও বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে যেমন—পেটের আলসারফুড পয়জনিং থাইরয়েডের রোগ পিত্তথলির রোগ যেমন পিত্তথলিতে পাথর হওয়া কিডনির ইনফেকশন সঠিক চিকিৎসার অভাবে প্রস্রাবের ইনফেকশন কিডনিতে ছড়িয়ে গিয়ে বমি বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে আমরা যখন খাবার খাই খাবারের সাথে সাথে পাকস্থলীর অ্যাসিড শরীরের নিচের দিকে নামে যদি এর উল্টো ঘটে অর্থাৎ পাকস্থলীর অ্যাসিড নিচে না নেমে বরং ওপরে গলার দিকে উঠে আসে তখন আমরা বুকে জ্বালাপোড়া অনুভব করি একে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা হার্টবার্ন বলা হয় অনেকেই আমরা এটাকে গ্যাস্ট্রিক গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা বা অ্যাসিডিটি বলে থাকিআমরা যখন খাবার খাই খাবারের সাথে সাথে পাকস্থলীর অ্যাসিড শরীরের নিচের দিকে নামে যদি এর উল্টো ঘটে অর্থাৎ পাকস্থলীর অ্যাসিড নিচে না নেমে বরং ওপরে গলার দিকে উঠে আসে তখন আমরা বুকে জ্বালাপোড়া অনুভব করি একে অ্যাসিড রিফ্লাক্স বা হার্টবার্ন বলা হয় অনেকেই আমরা এটাকে গ্যাস্ট্রিক গ্যাস্ট্রিকের ব্যথা বা অ্যাসিডিটি বলে থাকিএমন জ্বালাপোড়া যদি বারবার হতে থাকে তখন এই রোগকে বলা হয় গ্যাস্ট্রোইসোফেজিয়াল রিফ্লাক্স ডিজিজ (gastrooesophageal reflux disease) প্রধান লক্ষণগুলো হলোবুক জ্বালাপোড়া করা বুকের ঠিক মাঝামাঝি জায়গাটায় জ্বালাপোড়া অনুভব করামুখে অপ্রীতিকর টক স্বাদ পাওয়া পাকস্থলীর অ্যাসিড মুখে চলে আসার কারণেএছাড়াও আপনার আরো যেসব লক্ষণ থাকতে পারেপেট ফাঁপাবমি ভাব হওয়াবারবার কাশি বা হেঁচকি হতে থাকাকণ্ঠ কর্কশ হয়ে যাওয়াশ্বাসে দুর্গন্ধ আসাখাওয়ার পরে শোবার পরে বা উপুড় হলে লক্ষণগুলো আরো তীব্র রূপ ধারণ করতে পারে নির্দিষ্ট কোন কারণ ছাড়াই সময়ে সময়ে অনেকের বুক জ্বালাপোড়া করে তবে মাঝেমধ্যে কিছু জিনিস এই জ্বালাপোড়ার সূত্রপাত ঘটায় বা তীব্রতা বাড়ায় যেমননির্দিষ্ট কিছু খাবার ও পানীয় চর্বিযুক্ত বা মসলাদার খাবার কফি চকলেট অ্যালকোহল ইত্যাদিধূমপানমানসিক চাপ ও উদ্বেগওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হওয়াগর্ভাবস্থাহায়াটাস হার্নিয়া (hiatus hernia) নামের একটা রোগ যেখানে পাকস্থলীর কিছু অংশ বুকে উঠে আসে কিছু ওষুধ যেমন আইবুপ্রোফেন (ibuprofen) আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শে এই ওষুধগুলি খান তাহলে কোনভাবেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ওষুধগুলো বন্ধ করবেন না দৈনন্দিন জীবনে সহজ কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আপনি অ্যাসিড রিফ্লাক্স সারিয়ে তুলতে বা কমিয়ে আনতে পারবেন যেমনএকবারে ভরপেট খেলে এই সমস্যা বেশি হয় সারা দিনে ভাগ করে অল্প অল্প করে খাবার খাবেনযে সকল খাবার কিংবা পানীয় খেলে আপনার সমস্যা বেড়ে যায় সেগুলো এড়িয়ে চলবেনরাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ৩৪ ঘন্টার মধ্যে কিছু খাবেন না বিছানায় শোবার সময় আপনার মাথা আর বুক যাতে কোমরের চেয়ে ১০২০ সেন্টিমিটার উঁচু অবস্থানে থাকে তাতে পাকস্থলীর অ্যাসিড গলা পর্যন্ত উঠে আসতে পারবে না বালিশ দিয়ে মাথা উঁচু করবেন না তোষকের নিচে বা খাটের নিচে কিছু দিয়ে খাটের একটা দিক উঁচু করে নিবেন এবং সেইদিকে মাথা দিবেনএমন কাপড় পরবেন না যা কোমরে আঁটসাঁট হয়ে বসে থাকেআপনার ওজন অতিরিক্ত হলে তা কমিয়ে ফেলুনধূমপান করবেন নামনে প্রশান্তি আনে এমন কিছু কাজ নিয়মিত করুন নিজে নিজে আইবুপ্রোফেন (ibuprofen) অথবা অ্যাসপিরিন (aspirin) সেবন করবেন না কারণ এই ওষুধগুলো বদহজম আরো বাড়ায় তবে আপনি যদি ডাক্তারের পরামর্শে এই ওষুধগুলি খান তাহলে কোনভাবেই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে ওষুধগুলো বন্ধ করবেন না যদি জীবনধারায় পরিবর্তন এনেও কোন উপকার না হয় যদি এই সমস্যা ৩ সপ্তাহ বা তার বেশী সময় ধরে প্রায় প্রতিদিনই দেখা দেয় যদি তীব্র ব্যথা অনুভব করেনযদি ৫৫ বছর বা তার বেশী বয়সী হয়ে থাকেনযদি অন্যান্য লক্ষণ দেখা দেয় যেমনকোন কারণ ছাড়াই শরীরের ওজন কমে যাওয়াগলায় খাবার আঁটকে যাওয়া বা খাবার গিলতে কষ্ট হওয়াঘনঘন বমি করাবমি বা পায়খানার সাথে রক্ত যাওয়া পায়খানা কালো হওয়া অথবা বমির মধ্যে কফি দানার মত কালচে বাদামি কিছু থাকাপেটে চাকার মত মনে হওয়াআয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতায় ভোগাআপনার লক্ষণগুলো কোন গুরুতর রোগের কারণে কি না ডাক্তার সেটা যাচাই করবেন এবং আপনাকে যথাযথ চিকিৎসা প্রদান করবেনডাক্তার কীভাবে আপনাকে সহায়তা করতে পারেনলক্ষণগুলো কমিয়ে আনতে ডাক্তার আপনাকে অ্যান্টাসিড (antacid) নামক একটি ওষুধ দিতে পারেন এই ওষুধটি খাবারের সাথে অথবা খাবারের ঠিক পরপর সেবন করা শ্রেয় কারণ এই সময়েই বুকে জ্বালাপোড়ার সমস্যা বেশি হয় খাবারের সাথে সেবন করলে ওষুধটির কার্যকারিতার সময়ও বৃদ্ধি পেতে পারেডাক্তার আপনাকে অন্য আরেক প্রকারের ওষুধ সেবন করার পরামর্শও দিতে পারেন যেগুলো আপনার পাকস্থলীর অ্যাসিড তৈরির পরিমাণ কমিয়ে আনবে যেমনওমিপ্রাজল (omeprazole) ল্যান্সোপ্রাজল (lansoprazole)আপনার লক্ষণ সেরে উঠছে কি না তা দেখার জন্য এই ওষুধগুলোর একটি আপনাকে মাস দুয়েকের জন্য দেওয়া হতে পারেযদি ওষুধ বন্ধ করার পর আপনার উপসর্গ আবার বেড়ে যায় অবশ্যই ডাক্তারের কাছে ফেরত যাবেন আপনার হয়ত আরো দীর্ঘ সময় ওষুধ খেতে হতে পারেযেসব পরীক্ষা ও অপারেশন করা হয়আপনার রোগের লক্ষণ যদি বেশী গুরুতর হয় অথবা ওষুধ খেলেও কোন উপকার না হয় তাহলে আপনাকে একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পাঠানো হতে পারে বিশেষজ্ঞ ডাক্তার যা করতে পারেন তা হল বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে এটি সাধারণত দুশ্চিন্তার বিষয় নয় গর্ভাবস্থায় সুস্থ জীবনধারা এবং কিছু ঘরোয়া সমাধান অনুসরণ করলে এসব সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারেএটি সাধারণত দুশ্চিন্তার বিষয় নয় গর্ভাবস্থায় সুস্থ জীবনধারা এবং কিছু ঘরোয়া সমাধান অনুসরণ করলে এসব সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায় গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়ার মতো হজমের সমস্যা হলে সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়—বুকের মাঝখানে জ্বালাপোড়া অথবা ব্যথা হওয়ামুখে টক স্বাদ আসাপেট ফাঁপা অথবা ভরা ভরা লাগা বমি বমি লাগা ও বমিগলা জ্বলা ও গলায় খাবার উঠে আসাসাধারণত খাবার খাওয়া অথবা পানীয় পান করার পর পরই কিংবা খাওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে শুয়ে পড়লে অ্যাসিডিটির লক্ষণগুলো দেখা যায় তবে কখনো কখনো খাবার খাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরেও বুক জ্বালাপোড়া শুরু হতে পারে বুক জ্বালাপোড়ার অনুভূতি কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত থাকতে পারে বুক জ্বালাপোড়া অথবা বদহজমের সমস্যা গর্ভাবস্থার যেকোনো সময়েই শুরু হতে পারে তবে সাধারণত গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়তে থাকে বিশেষ করে গর্ভধারণের ২৭তম সপ্তাহের পর থেকে গর্ভবতী নারীদের এই সমস্যায় বেশি ভুগতে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় শরীরে বিশেষ কিছু হরমোন (যেমন প্রোজেস্টেরন) তুলনামূলক বেশি পরিমাণে তৈরি হয় এ হরমোনগুলোর প্রভাবে পাকস্থলী থেকে এসিড গলায় উঠে আসতে পারে এমন হলে বুক জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হয় হরমোনগুলোর প্রভাবে খাবার হজম হতেও বেশি সময় লাগে এ কারণে হজমের সমস্যাও হতে পারেআপনি জানেন কি শুনতে অদ্ভুত লাগলেও একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় যেসব নারীরা বেশি বুক জ্বালাপোড়া অনুভব করেছেন তাদের গর্ভের শিশুর তুলনামূলকভাবে বেশি চুল নিয়ে জন্মেছে এখান থেকে ধারণা করা হয় গর্ভাবস্থায় যেসব হরমোনের জন্য বুক জ্বালাপোড়া বেড়ে যায় সেসব হরমোন গর্ভের শিশুর চুল বড় হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে তবে এই বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি[২]এ ছাড়া গর্ভে বাড়ন্ত শিশুর জন্য পাকস্থলীতে চাপ লাগার কারণে এসিড ওপরে উঠে আসে বলে ধারণা করা হয় এটি বুক জ্বালাপোড়া বাড়িয়ে দিতে পারে সেই সাথে বাড়ন্ত শিশু পরিপাক নালীর ওপরে চাপ বাড়িয়ে হজমের গতি কমিয়ে দিতে পারেএসব কারণের পাশাপাশি সাধারণ অবস্থায় যেসব কারণে বুক জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে সেসব কারণেও গর্ভবতী নারীদের বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে যেমন—প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খাবার খেলে ঝাল অথবা তৈলাক্ত খাবার খেলেটকজাতীয় খাবার খেলে যেমন টমেটো চকলেট খেলে এবং কফি পান করলেঅতিরিক্ত ওজন হলেমানসিক চাপ বা স্ট্রেসে থাকলে গর্ভাবস্থার আগে থেকেই বদহজমের সমস্যা থাকলেকোনো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলেপূর্বের কোনো গর্ভকালীন সময়ে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকলে বিশেষ দ্রষ্টব্যঃ আপনার যদি মনে হয় যে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে নিয়মিত কোনো ঔষধ খাওয়ার কারণে আপনার বুক জ্বালাপোড়া হচ্ছে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন ডাক্তার সেটির বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন তবে কখনোই নিজে নিজে কোনো ঔষধ পরিবর্তন করার অথবা বাদ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না জীবনধারা ও খাবারদাবারে কিছু পরিবর্তন আনলে বুক জ্বালাপোড়ার উপসর্গ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে এজন্য—১ অল্প অল্প করে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করুনগর্ভাবস্থায় কখনো কখনো কোনো খাবার একবারে অনেক বেশি পরিমাণে খেতে ইচ্ছা করতে পারে কিন্তু ভরপেট খেলে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা বেশি হতে পারে এজন্য দৈনিক তিনবেলা খাওয়ার পরিবর্তে সারাদিনের খাবারগুলোকে ভাগ করে অল্প অল্প করে ছয় বেলা খেতে পারেনএতে করে কিছুক্ষণ পর পর খাওয়ার ইচ্ছাও পূরণ হয় পাশাপাশি অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতাও রোধ করা যায়খাবারের পাশাপাশি পানি খাওয়ার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মনে রাখার চেষ্টা করবেন খাবার খাওয়ার সময়ে পানি বেশি খেলে পেট বেশি ভরে উঠতে পারে তাই খাওয়ার মাঝে পানি খাওয়ার পরিবর্তে খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে অথবা পরে পানি খাবেনএকজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে[৭] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন২ সবসময় সোজা হয়ে বসে ধীরে ধীরে খাবার খাবেনখাবার ভালো করে চিবিয়ে খাওয়া হলে পাকস্থলীতে খাবার হজম প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ হতে পারে এ ছাড়াও দ্রুত খাবার খেলে কিংবা খাওয়ার সময়ে কথা বললে খাবারের সাথে বাতাস মুখে ঢুকে যায় এতে পেটে বেশি গ্যাস তৈরি হয়ে পেট ফাঁপা লাগতে পারে এজন্য সময় নিয়ে মনোযোগ সহকারে খাবার ধীরে চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে করে বদহজম ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কিছুটা কমতে পারেপাশাপাশি খাওয়ার সময়ে সোজা হয়ে বসে খাবেন এতে পাকস্থলীর ওপর থেকে চাপ কমবে এটি বদহজম প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে৩ ঘুমানোর ঠিক আগে খাবার খাবেন নারাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত তিন ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে ফেলার চেষ্টা করুন[৮] এ ছাড়াও দিনের বেলা খাওয়ার পরও তিন ঘন্টার মধ্যে শুয়ে পড়বেন না খাওয়ার পর পরই শুয়ে পড়লে বুক জ্বালাপোড়া বেড়ে যেতে পারে৪ নির্দিষ্ট কিছু খাবার এড়িয়ে চলুনযে ধরনের খাবার খেলে অথবা পানীয় পান করলে আপনার বুক জ্বালাপোড়া বেশি হয় সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন এমন খাবার হতে পারে কফি চকলেট লেবুজাতীয় ফল টমেটো কোমল পানীয় তৈলাক্ত ঝাল অথবা ঝাঁঝালো খাবার৫ ঘুমানোর সময়ে মাথার অবস্থান ঠিক রাখুনঘুমানোর সময় মাথা ও ঘাড় শরীর থেকে ছয়–আট ইঞ্চি উঁচুতে রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করুন এজন্য তোষক অথবা খাটের নিচে শক্ত কোনো কাঠের ব্লক অথবা অন্য কিছু দিয়ে উঁচু করে নিয়ে সেদিকটাতে মাথা ও ঘাড় রেখে ঘুমাতে পারেন এতে পাকস্থলীর এসিড ওপরে ওঠার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়[৯]তবে মাথার নিচে বেশি বালিশ দিয়ে ঘুমাবেন না এটি বুক জ্বালাপোড়া কমাতে তেমন সাহায্য করে না[১০]৬ ওজন নিয়ন্ত্রণ করুনস্বাভাবিক ওজনের একজন নারীর ওজন গর্ভাবস্থায় ১১৫ কেজি–১৬ কেজি পর্যন্ত বাড়লে সেটিকে স্বাভাবিক ধরা হয় তাই গর্ভকালীন সময়ে আপনার ওজন যাতে এর চেয়ে বেশি না বাড়ে সেদিকে লক্ষ রাখুন অতিরিক্ত ওজনের কারণে বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে[১১]৭ ঢিলেঢালা জামাকাপড় বাছাই করুনগর্ভকালীন সময়ে পরার জন্য ঢিলেঢালা কাপড় বেছে নিন আঁটসাঁট জামা পরলে পেটে চাপ পড়ে বুক জ্বালাপোড়া বেশি অনুভূত হতে পারে৮ চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুনস্ট্রেস বা মানসিক চাপের কারণেও বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যাও তৈরি হতে পারে[১২] এজন্য চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন গর্ভাবস্থায় করা যায় এমন কিছু যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে পারেননিঃশ্বাসের ব্যায়াম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন এই ব্যায়ামটি শুয়ে চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারে আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেন ব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন— শুয়ে থাকলে পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন হাতের তালু ওপরের দিকে অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুন চেয়ারে বসে থাকলে দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন দাঁড়িয়ে থাকলে পা দুটো সমান ভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন এবার লম্বা করে শ্বাস নিন খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিন তারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে নিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিতে থাকুন তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন৯ সিগারেট ও মদ বর্জন করুনযদি আপনি মদ অথবা সিগারেটে আসক্ত থাকেন তাহলে এসবের অভ্যাস যত দ্রুত সম্ভব ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন এগুলোর বহু ক্ষতিকর প্রভাবের একটি হচ্ছে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা সৃষ্টি করা তাছাড়া মদ ও সিগারেট গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি করে তাই যত দ্রুত সম্ভব এগুলো ছেড়ে দিন১০ চুইং গাম চিবানো এড়িয়ে চলুনচুইং গাম চিবালে পেটে বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে যা থেকে পেট ফাঁপা ও হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে[১৩] তাই চুইং গাম খাওয়া এড়িয়ে চলবেন সাধারণত ঘরোয়া সমাধানগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে তবে এরপরও লক্ষণগুলো না কমলে ঔষধ খেতে পারেনপ্রথমে অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট জাতীয় ঔষধ সেবন করতে পারেন এই ধরনের ঔষধ সাধারণত বুক জ্বালাপোড়ার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পরে সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয় তবে কখনো কখনো ডাক্তার আপনাকে খাওয়ার আগে অথবা ঘুমাতে যাওয়ার আগে এসব ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন যদি অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট সেবনের পরেও লক্ষণের কোনো উন্নতি না হয় তাহলে এগুলোর পরিবর্তে ওমিপ্রাজল খেয়ে দেখতে পারেনআপনার যদি আয়রন ট্যাবলেট ও অ্যান্টাসিড—দুটো ঔষধই সেবনের প্রয়োজন হয় তাহলে ঔষধ দুটো আলাদা সময়ে সেবন করবেন একই সময়ে সেবন করলে অ্যান্টাসিড শরীরে আয়রন শোষণ কমিয়ে ফেলতে পারে তাই অ্যান্টাসিড খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে অথবা ২ ঘণ্টা পরে আয়রন ট্যাবলেট খাবেনউল্লেখ্য অ্যান্টাসিড অ্যালজিনেট ও ওমিপ্রাজল—এগুলো সবই ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনগর্ভাবস্থায় সাধারণত অ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধ সেবন করা নিরাপদ৷ তবে কিছু অ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধ গর্ভের শিশুর ক্ষতি সাধন করতে পারে গর্ভকালীন সময়ে এইসব নির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকবেন যেমন— বাইকার্বনেটযুক্ত অ্যান্টাসিড গর্ভকালীন সময়ে বাইকার্বনেটযুক্ত অ্যান্টাসিড (যেমন সোডিয়াম বাইকার্বনেট) সেবন করলে কিছু ক্ষেত্রে মা ও শিশুর শরীরে অতিরিক্ত পানি জমতে পারে তাই এগুলো এড়িয়ে চলাই শ্রেয় ম্যাগনেশিয়াম ট্রাইসিলিকেটযুক্ত অ্যান্টাসিড গর্ভাবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে এবং উচ্চ মাত্রায় ম্যাগনেশিয়াম ট্রাইসিলিকেটযুক্ত অ্যান্টাসিড সেবন করলে গর্ভের শিশুর শ্বাসকষ্ট ও কিডনিতে সমস্যা হতে পারেকখন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে— খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা পরিবর্তনের পরেও উপকার না হলে খাবার খেতে সমস্যা হলে অথবা খাওয়ার পরে বমি হয়ে গেলে পেট ব্যথা হলে বারবার বমি হলে বমিতে টকটকে লাল রক্ত অথবা কফির দানার মতো কিছু দেখা গেলে পায়খানা কালো হলে খাবার গিলতে সমস্যা অথবা গলায় আটকে যাচ্ছে মনে হলে কোনো চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমে গেলে তীব্র বুক জ্বালাপোড়া অথবা বুক ব্যথা হলে বারবার বদহজম হলে বুক জ্বালাপোড়ার সাথে জ্বর অথবা মাথাব্যথা থাকলেপড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা গর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানো খুবই কমন একটি সমস্যা এক্ষেত্রে আপনার মনে হতে পারে যেন চারপাশের সবকিছু দুলতে বা ঘুরতে শুরু করেছে আবার এমনও মনে হতে পারে যে আপনি নিজেই ঘুরছেন কখনো কখনো আপনি হঠাৎ করে ভারসাম্য হারিয়ে পড়েও যেতে পারেনগর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানো খুবই কমন একটি সমস্যা এক্ষেত্রে আপনার মনে হতে পারে যেন চারপাশের সবকিছু দুলতে বা ঘুরতে শুরু করেছে আবার এমনও মনে হতে পারে যে আপনি নিজেই ঘুরছেন কখনো কখনো আপনি হঠাৎ করে ভারসাম্য হারিয়ে পড়েও যেতে পারেনআবার কারও কারও হয়তো মাথা ঝিম ঝিম করতে পারে কিংবা হালকা হালকা লাগতে পারে মনে হতে পারে যেন আপনি এখনই জ্ঞান হারিয়ে ফেলবেনগর্ভাবস্থায় মাথা ঘুরানো অস্বাভাবিক নয় এ ধরনের সমস্যা হলে ভয় না পেয়ে কিছু সাবধানতা মেনে চলতে হবে এভাবে আপনি নিজের ও গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারবেন সাধারণত গর্ভধারণের প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষদিকে মাথা ঘুরানোর সমস্যা শুরু হয় এরপর সমগ্র গর্ভকাল জুড়েই এই সমস্যা থাকতে পারে আবার কারও কারও গর্ভধারণের পর থেকেই মাথা ঘুরানোর সমস্যা দেখা দিতে পারে তবে গর্ভাবস্থায় সবারই মাথা ঘুরানোর সমস্যা হবে—বিষয়টি এমন নয় গর্ভাবস্থায় কিছু বিশেষ কারণে মাথা ঘুরানোর সমস্যা দেখা দেয়—হরমোনের প্রভাব এসময়ে আপনার শরীরে বেশ কিছু হরমোন ওঠানামা করে এসব হরমোনের প্রভাবে মাথা ঘুরাতে পারে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি গর্ভকালীন প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষের দিকে আপনার শরীরে রক্ত চলাচল প্রায় দেড়গুণ বেড়ে যায় একারণে অতিরিক্ত গরম লাগা ও ঘাম হওয়ার পাশাপাশি মাথা ঘুরাতে পারেএসবের পাশাপাশি আরও যেসব কারণে মাথা ঘুরাতে পারে—ব্রেইনে পরিমাণমতো রক্ত সরবরাহ না হওয়ায় ব্রেইনে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেনের অভাব হলে যেমন— হঠাৎ করে চেয়ারে বসা অথবা বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে দ্রুত দাঁড়িয়ে গেলে[১] এসময়ে ব্রেইনে রক্ত সরবরাহ হুট করে কমে যায় পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকলে চিত হয়ে শোয়ার ফলে গর্ভের শিশুর জন্য রক্তনালীতে চাপ পড়ে ফলে ব্রেইনে রক্ত সরবরাহ কমে যেতে পারে শরীরে পানিশূন্যতা হলে অতিরিক্ত গরমে ক্লান্ত লাগলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ কমে গেলে ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ কমে গেলে রক্তশূন্যতায় ভুগলে[২] কোনো কারণে আতঙ্কিত হলে অথবা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলেএ ছাড়াও মাইগ্রেন ও কানের সমস্যাসহ অন্য কোনো রোগ থাকলেও আপনার মাথা ঘুরানোর সমস্যা হতে পারে সহজ কিছু নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে আপনি মাথা ঘুরানোর সমস্যার চিকিৎসা করতে পারবেন তবে কোনো নির্দিষ্ট রোগের কারণে মাথা ঘুরালে এটি পুরোপুরি সারাতে ঐ রোগের সঠিক চিকিৎসা করতে হবেগর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানো প্রতিরোধের জন্য নিচের নিয়মগুলো মেনে চলুন—যা করবেন গর্ভকালীন সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিবেন বসা অথবা শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে ওঠার সময় ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াবেন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে[৪] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন সারাদিনে অল্প অল্প করে বারবার পুষ্টিকর খাবার খাবেন নিয়মিত ব্যায়াম করবেন—এতে শরীর ও ব্রেইনে রক্ত চলাচল ভালো হয়[৫] দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মাথা ঘুরালে যত দ্রুত সম্ভব ধীরে ধীরে হেঁটে আশেপাশের চেয়ারে অথবা বিছানায় বসে পড়বেন এরপরেও মাথা ঘুরানো না কমলে এক কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা অবস্থায় মাথা ঘুরলে দ্রুত এক কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন ঢিলেঢালা জামা পরবেন যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাস চলাচল করতে পারে খোলামেলা ও বাতাসপূর্ণ ঘরে থাকবেন প্রয়োজনে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে খোলা জায়গায় হাঁটতেও পারেন তবে যদি মনে হয় যে আপনি মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যেতে পারেন তাহলে হাঁটাহাঁটি করবেন না অথবা বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না তখন আশেপাশের কাউকে জানালা খুলে দিতে বলবেন একটানা অনেকক্ষণ ধরে অথবা অতিরিক্ত পরিমাণে ভারী কোনো কাজ বা শারীরিক পরিশ্রম না করে বরং কাজের ফাঁকে ফাঁকে কিছুক্ষণ পা তুলে বসে বিশ্রাম নিবেন সেই সাথে নিয়মিত বিরতিতে পানি পান করবেন[৬] কোনো ঔষধ খাওয়া শুরু করার পর থেকে মাথা ঘুরানোর সমস্যা শুরু হয়েছে মনে হলে পরবর্তী চেকআপে ডাক্তারকে বিষয়টি জানাবেন গর্ভাবস্থায় চাকফি এড়িয়ে চলুন ধূমপানের অভ্যাস থাকলে সেটি ছেড়ে দিনযা করবেন না বসা ও শোয়া অবস্থা থেকে হঠাৎ করে দ্রুত দাঁড়িয়ে যাবেন না হঠাৎ করে নিচু হয়ে ঝুঁকে কিছু তুলবেন না নিচু হয়ে জুতা পরবেন না প্রয়োজনে একটি চেয়ার অথবা টুলে বসে জুতা পরবেন আঁটসাঁট জামা পরবেন না বদ্ধ ভ্যাঁপসা ও গরম জায়গায় বেশিক্ষণ থাকবেন না মাথা ঘুরানো অবস্থায় যেসব কাজ করলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে সেগুলো এড়িয়ে চলবেন যেমন মই অথবা সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করা গাড়ি চালানো সাঁতার কাটা কিংবা ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা পিঠে হেলান দিয়ে সোজা হয়ে বা চিত হয়ে শুয়ে থাকবেন নাগর্ভকালীন সময়ের শেষের দিকে এবং প্রসববেদনার সময় পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা ঠিক নয় গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ পর ঘুমানোর সময়েও পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা থেকে বিরত থাকবেন কেননা এভাবে শুয়ে থাকলে মৃত শিশু জন্মানোর সম্ভাবনা বাড়তে পারে[৭]সাধারণত গর্ভাবস্থায় মাথা ঘুরানো একটি স্বাভাবিক ঘটনা এরপরেও চেকআপের সময়ে এই বিষয়টি আপনার ডাক্তার অথবা মিডওয়াইফকে জানিয়ে রাখুনকখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে গর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানো কমন একটি লক্ষণ তবে কখনো কখনো কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা (যেমন ব্রেইন স্ট্রোক কানের ইনফেকশন ও প্রিএকলাম্পসিয়া) এর কারণেও মাথা ঘুরাতে পারে তাই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে যেসব লক্ষণ থাকলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে— মুখ হাত অথবা পা অবশ হয়ে আসলে মাথা ঘুরানোর সাথে বমি বমি ভাব থাকলে মাথা ঘুরানোর পাশাপাশি কানে শুনতে অসুবিধা হলে মাথা ঘুরানোর সাথে কানের ভেতরে ভোঁ ভোঁ কিংবা বাঁশির মতো শব্দ হচ্ছে মনে হলে রক্তশূন্যতা থাকলে বার বার অথবা লম্বা সময় ধরে মাথা ঘুরানোর সমস্যা হলে মাথা ঘুরানোর সমস্যা নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা হলেমাথা ঘুরানোর সাথে নিচের ৯টি লক্ষণের কোনোটি থাকলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে নেওয়া জরুরি— যোনিপথ দিয়ে রক্তপাত হলে তলপেটে ব্যথা হলে বুকে ব্যথা হলে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে বুক ধড়ফড় করলে মাথা ঘুরানোর পাশাপাশি চোখে ঝাপসা দেখলে কিংবা দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন আসলে মাথা ঘুরানোর পাশাপাশি মাথা ব্যথা হলে মাথা ঘুরানো প্রকট হলে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গিয়ে মাথা অথবা পেটে আঘাত পেলে কিংবা ১ মিনিটের বেশি সময় ধরে অজ্ঞান থাকলেপড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় প্রায়ই মাথা ব্যথা হতে পারে সাধারণ মাথা ব্যথা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর না হলেও আপনার জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে মাথা ব্যথা সেরে উঠতে সাধারণত বেশ কিছুটা সময় লাগে তবে কিছু সহজ পরামর্শ মেনে চলার মাধ্যমে আপনি অনেকাংশেই মাথা ব্যথা এড়িয়ে চলতে পারবেনগর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় প্রায়ই মাথা ব্যথা হতে পারে সাধারণ মাথা ব্যথা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর না হলেও আপনার জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে মাথা ব্যথা সেরে উঠতে সাধারণত বেশ কিছুটা সময় লাগে তবে কিছু সহজ পরামর্শ মেনে চলার মাধ্যমে আপনি অনেকাংশেই মাথা ব্যথা এড়িয়ে চলতে পারবেন গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে মাথা ব্যথা আপনাকে বেশ ভোগাতে পারে তবে সময়ের সাথে এই সমস্যা কমতে থাকে সাধারণত গর্ভধারণের শেষের ছয় মাসে মাথা ব্যথার সমস্যা অনেকটাই কমে যায় কারও কারও ক্ষেত্রে মাথা ব্যথা পুরোপুরি সেরেও যায় গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে আপনার মাথা ব্যথা হতে পারে যেমন—হরমোনের পরিবর্তনক্ষুধা লাগা অথবা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা এতে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে গিয়ে মাথা ব্যথা হতে পারেপানিশুন্যতা বা ডিহাইড্রেশনমানসিক চাপ ক্লান্তি ও পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবদৃষ্টিশক্তির সমস্যা অস্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গিতে শোয়া বসা অথবা দাঁড়িয়ে থাকা বেশি স্ক্রিনটাইমের কারণে অর্থাৎ বেশিক্ষণ ধরে মোবাইল ল্যাপটপ অথবা টিভির দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের ওপর চাপ পড়া ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় বেশি বেশি পান করাএ ছাড়াও কিছু মারাত্মক জটিলতার কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে যেমন প্রিএকলাম্পসিয়া ব্রেইনে রক্তক্ষরণ ও ব্রেইন অথবা ব্রেইন এর পর্দার ইনফেকশন এসব কারণ নিয়ে আর্টিকেলের পরবর্তী অংশে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে গর্ভাবস্থায় সাধারণ মাথা ব্যথার চিকিৎসায় প্রথমে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করুন এগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে আপনি হয়তো ঔষধ ছাড়াই মাথা ব্যথা সারিয়ে তুলতে পারবেনএরপরেও মাথা ব্যথা না সারলে ঔষধ খেতে পারেন তবে তীব্র মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিন এ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা কখন বিপদজনক হতে পারে সেটি নিচে তুলে ধরা হয়েছে সেসব ক্ষেত্রেও দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেঘরোয়া সমাধানগর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা মোকাবেলার প্রধান উপায় হলো মাথা ব্যথার কারণগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা গর্ভাবস্থায় ঘরোয়াভাবে মাথা ব্যথা কমাতে যা করবেন—১ মাথায় ঠাণ্ডা সেঁক দিনহালকা মাথা ব্যথায় ঠাণ্ডা সেঁক দিলে সেটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে[১] এজন্য কিছু বরফের টুকরা একটি তোয়ালে কিংবা গামছায় পেঁচিয়ে নিন এরপর বিছানায় শুয়ে সেটি কপালের ওপরে দিয়ে রাখুন এ ছাড়া ফার্মেসি থেকে কোল্ড প্যাক কিনে সেটিও কপালে দিয়ে রাখতে পারেন২ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনপর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার না খেলে আপনি পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন এ ছাড়াও অতিরিক্ত গরমের জন্য কিংবা শারীরিক পরিশ্রমের কারণে শরীর থেকে পানি বের হয়ে গিয়ে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে যা থেকে আপনার মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাবেনএকজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে[২] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন৩ একটানা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকবেন নাএকটানা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে মাথা ব্যথা হতে পারে তাই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে নিয়মিত বিরতিতে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাবেন প্রয়োজনে দৈনিক তিনবেলা বেশি করে খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে ছয় বার খান অথবা দৈনিক তিনবার খাওয়ার পাশাপাশি ক্ষুধা লাগলে পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ও হালকা নাস্তা খেতে পারেনএ ছাড়া অবশ্যই সকালে ঠিকমতো নাস্তা খাওয়ার চেষ্টা করবেন রাতে ঘুমানোর আগে কোনো হালকা খাবার খেয়ে নিবেন এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খেয়ে ঘুমাতে যেতে পারেন দুধ লম্বা ও ভালো ঘুমে সাহায্য করেপড়ুন গর্ভবতীর খাবার তালিকা৪ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিনগর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরি রাতে অন্তত ৭–৯ ঘণ্টা ভালোমতো ঘুমানোর চেষ্টা করুন[৩][৪] প্রয়োজনে দিনের বেলাও কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারেনএ ছাড়া মাথা ব্যথা হলে অন্ধকার ও শান্ত জায়গায় শুয়ে থাকতে পারেন কিংবা কাজ করতে থাকলে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন এটি মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারেঘুমের একটি রুটিন মেনে চলুন প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করবেন খুব বেশি অথবা খুব কম না ঘুমিয়ে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন৫ ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুনঅতিরিক্ত চাকফি ও কোকের মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ও খাবার খেলে মাথা ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়[৫] তাই এগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন তবে হুট করে ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ না করে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনুন চাকফির বিকল্প হিসেবে চা পাতা ছাড়া বানানো আদা চা বা মসলা চা দুধ অথবা চিনিমুক্ত ফলের রস বেছে নিতে পারেনগর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় খাবার অথবা পানীয় খাওয়া এড়িয়ে চলবেন[৬] সাধারণত ২ কাপ কফি কিংবা ২–৩ কাপ চায়েই এই পরিমাণ ক্যাফেইন থাকতে পারে৬ দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুনগর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের দুশ্চিন্তা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলতে পারলে টেনশন টাইপ মাথা ব্যথা প্রতিরোধ করা যায় এজন্য চেষ্টা করবেন হাসিখুশি থাকতে মন ভালো রাখতেমাথায় কোনো চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকলে আপনার পছন্দের কোনো কাজে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন পরিবারের কারও সাথে দুশ্চিন্তার বিষয়টি ভাগাভাগি করে নিতে পারেন গর্ভাবস্থায় করা যায় এমন কিছু যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে পারেন এ ছাড়া আপনি নিয়মিত শরীরচর্চা করলে সেটি মানসিক চাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করবেনিঃশ্বাসের ব্যায়াম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন এই ব্যায়ামটি শুয়ে চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারে আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেন ব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন— শুয়ে থাকলে পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন হাতের তালু ওপরের দিকে অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুন চেয়ারে বসে থাকলে দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন দাঁড়িয়ে থাকলে পা দুটো সমান ভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন এবার লম্বা করে শ্বাস নিন খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিন তারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে নিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিতে থাকুন তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন৭ আলোবাতাসপূর্ণ ও খোলামেলা ঘরে থাকুনজানালাবিহীন বদ্ধ ঘরে থাকলে এবং অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার কারণেও মাথা ব্যথা হতে পারে তাই ভ্যাপসা ও গুমোট ঘরে না থাকার চেষ্টা করবেন পর্যাপ্ত আলোবাতাসপূর্ণ ও খোলামেলা বাসায় থাকলে ভালো হয় সেটি সম্ভব না হলে প্রতিদিন আশেপাশের খোলামেলা জায়গায় কিছুক্ষণ হালকা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন৮ মাথা ব্যথা উদ্রেক করে এমন জিনিস এড়িয়ে চলুনআপনি যদি লক্ষ করে থাকেন যে কিছু নির্দিষ্ট জিনিস আপনার মাথা ব্যথা (বিশেষ করে মাইগ্রেন) উদ্রেক করে তাহলে সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন এভাবে আপনি অনেক ক্ষেত্রেই মাথা ব্যথা প্রতিরোধ করতে পারবেন মাথা ব্যথার উদ্রেক ঘটাতে পারে এমন কিছু জিনিস হলো—তীব্র শব্দ তীব্র কিংবা উজ্জ্বল সাদা আলো নির্দিষ্ট খাবার যেমন চা কফি কমলা চকলেট ও পনির তীব্র গন্ধউল্লেখ্য একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম জিনিসের কারণে মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে তাই আপনার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো জিনিসে মাথা ব্যথা হয় কি না সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুনঔষধগর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথার চিকিৎসায় পেইনকিলার বা ব্যথার ঔষধ হিসেবে সাধারণত প্রথম পছন্দ হলো প্যারাসিটামল এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ তবে আপনার জন্য উপযুক্ত ডোজ সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে কিংবা ঔষধের বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনএ ছাড়া প্যারাসিটামলে কাজ না হলে অথবা অন্য কোনো ঔষধ সেবনের প্রয়োজন হলেও ডাক্তারের পরামর্শ নিন গর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের ঔষধ সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তমকিছু ঔষধ সাধারণ সময়ে মাথা ব্যথার চিকিৎসায় ব্যবহৃত হলেও গর্ভাবস্থায় সেগুলো এড়িয়ে চলবেন যেমন— কোডেইন জাতীয় ব্যথার ঔষধ ননস্টেরয়ডাল প্রদাহনাশক বা ব্যথার ঔষধ যেমন আইবুপ্রোফেন ও অ্যাসপিরিন গর্ভকালীন সময়ে ননস্টেরয়ডাল ব্যথার ঔষধ চিকিৎসকের নির্দেশ ছাড়া সেবন করবেন না গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে এ ধরনের ঔষধ সেবনের ফলে গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটি হতে পারে এমনকি গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে[৭] অন্যদিকে গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহ বা তারপরে এই ঔষধ সেবন করলে আপনার অনাগত শিশুর কিডনিতে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে[৮] এ ছাড়া গর্ভের শিশুর হার্টের সমস্যা হতে পারে[৯] গর্ভকালীন সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হওয়া মাথা ব্যথা সাধারণত প্রসবের পরপরই ভালো হয়ে যায় তবে প্রসবের পরেও যদি আপনার মাথা ব্যথার সমস্যা থাকে তাহলে এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিনএ ছাড়া ঘরোয়া সমাধান সঠিকভাবে মেনে চলার এবং ঔষধ (যেমন প্যারাসিটামল) খাওয়ার পরেও আপনার মাথা ব্যথা ভালো না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন উল্লেখ্য গুরুতর সমস্যার কারণে মাথা ব্যথা হলে সেটি সাধারণত বিশ্রাম নিলেও ভালো হয়ে যায় না বরং ধীরে ধীরে ব্যথার আরও অবনতি হতে পারে এবং মাথা ব্যথা বারবার ফিরে আসতে পারে এ ধরনের মাথা ব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে নিচের লক্ষণগুলোর যেকোনোটি দেখা দিলে দেরি না করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে—তীব্র মাথা ব্যথা চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন চোখে ঝাপসা দেখা অথবা চোখে আলোর ঝলসানি দেখা পাঁজর বরাবর ঠিক নিচে ব্যথা হওয়া হঠাৎ করে মুখ হাত পায়ের পাতা ও গোড়ালি ফুলে যাওয়া ওপরের যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়াএসব প্রিএক্লাম্পসিয়া এর লক্ষণ প্রিএক্লাম্পসিয়া উচ্চ রক্তচাপ জনিত একটি মারাত্মক জটিলতা এটি হলে আপনার জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে সময়মতো চিকিৎসা শুরু না করলে এটি আপনার ও সন্তানের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেএ ছাড়াও মাথা ব্যথা কখনো কখনো ব্রেইনে রক্তক্ষরণ অথবা ব্রেইন বা এর পর্দায় ইনফেকশনসহ মারাত্মক কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে তাই নিচের কোনো লক্ষণ দেখা দিলেও রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবেন বাড়িঘর পরিষ্কার করা থেকে শুরু করে দেরিতে ঘুমানো – এমন অনেক কারণেই মাথাব্যথা হতে পারে ১ মানসিক চাপের পরে রিল্যাক্স করা ২ জমে থাকা রাগ ৩ অস্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গি (Poor posture) ৪ খারাপ আবহাওয়া ৫ দাঁতে দাঁত ঘষা ৬ উজ্জ্বল আলো ৭ খাবার থেকে মাথাব্যথা ৮ যৌন সহবাস থেকে মাথাব্যথা ৯ আইসক্রিম আপনি সারা সপ্তাহে প্রতিদিন ১০ ঘণ্টা করে কাজ করেও সুস্থ বোধ করেন কিন্তু ছুটির দিন ভালো ঘুম দিয়ে উঠে দেখেন তীব্র ব্যথায় আপনার মাথা টনটন করছে কেন এমন হয় কারণটার ব্যখ্যা জটিল তবে সমাধানটা সহজ আপনি চাইলে কারণ না পড়ে সরাসরি নিচে সমাধানে পড়তে পারেনকারণ পুরো সপ্তাহের মানসিক চাপ শেষ হয়ে যাওয়ার ফলে শরীরের স্ট্রেস হরমোন (শারীরিক ও মানসিক চাপ বেড়ে গেলে নিঃসৃত বিশেষ হরমোন) নিঃসরণের পরিমাণ কমে যায় এর ফলে দ্রুতই মস্তিষ্কে নিউরোট্রান্সমিটার নামের বার্তা বহনকারী কিছু রাসায়নিক পদার্থের ক্ষরণ বেড়ে যায় এই পদার্থগুলো রক্তনালীকে প্রথমে সংকুচিত ও পরে প্রসারিত করার নির্দেশ পাঠায় যার ফলে মাথাব্যথা হয়সমাধানসপ্তাহ শেষে ছুটির দিনে বেশি ঘুমানোর লোভ সংবরণ করুন আট ঘন্টার বেশি ঘুমানোর কারণে মাথাব্যথা হতে পারে সবটুকু বিশ্রাম সপ্তাহের শেষে ছুটির দিনে নেবার জন্য রেখে দিবেন না মানসিক প্রশান্তি আনে এমন কিছু কাজ যেমন যোগব্যায়াম সপ্তাহের মাঝখানেই করার চেষ্টা করুন আপনি যখন রেগে যান তখন আপনার ঘাড়ের পেছনের মাংসপেশি ও মাথার ত্বক টানটান হয়ে মাথার চারিদিকে একটি আঁটসাঁট ব্যান্ড পরে থাকার মত অনুভূতি হয় এটি দুশ্চিন্তাজনিত মাথাব্যথা বা টেনশনটাইপ মাথাব্যথার একটি লক্ষণপ্রতিকার কীআপনার রাগ ওঠা শুরু হলে বুক ভরে ধীরে ধীরে শ্বাস নিন নাক দিয়ে শ্বাস নিন আর মুখ দিয়ে বের করে দিন এতে আপনার মাথা ও ঘাড়ের পেশি শিথিল হবে অস্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গী (যেমন কুঁজো হয়ে বসা) আপনার পিঠের উপরের দিকে ঘাড়ে ও কাঁধ দুটোতে চাপ সৃষ্টি করে যা থেকে মাথাব্যথা হতে পারেএই মাথাব্যথায় সাধারণত মাথার নিচের দিকে টনটনে ব্যথা করে এবং কখনো কখনো মুখমণ্ডলে বিশেষ করে কপালের দিকে ঝলকানির মত করে ব্যথার অনুভূতি হয়কীভাবে এর চিকিৎসা করবেনএকই ভঙ্গীতে দীর্ঘ সময় বসে বা দাঁড়িয়ে থাকবেন না সোজা হয়ে কোমরে ঠেক বা সাপোর্ট দিয়ে বসুন আপনার দীর্ঘক্ষণ ফোন ব্যবহার করার প্রয়োজন বা অভ্যাস থাকলে আলাদা হেডসেট বা ইয়ারফোন (Earphones) ব্যবহার করুন কারণ বেশি সময় ধরে মাথা ও কাঁধের মাঝামাঝি ফোন ধরে রাখলে আপনার মাংসপেশিতে চাপ পড়ে মাথাব্যথা হতে পারে আপনি একজন ফিজিক্যাল থেরাপিস্ট (physical therapist) এর পরামর্শও নিতে পারেন তারা আপনার দেহভঙ্গির সমস্যা বের করে সেটা সংশোধন করতে সাহায্য করতে পারবেনপারফিউমআপনার যদি মনে হয় যে ঘরের কাজ করলে আপনার মাথাব্যথা হয় তবে আপনার ধারণা সঠিকও হতে পারে বাসাবাড়ি পরিষ্কার করার কাজে ব্যবহৃত সাবান বা ডিটারজেন্ট সেই সাথে পারফিউম এবং সুগন্ধি এয়ার ফ্রেশনার – এগুলোতে নানান ধরনের রাসায়নিক পদার্থ থাকে যা মাথাব্যথার জন্য দায়ীকীভাবে এর চিকিৎসা করবেনকোন বিশেষ ঘ্রাণে যদি আপনার মাথাব্যথা শুরু হয় তবে তীব্র ঘ্রাণযুক্ত পারফিউম বা সাবান শ্যাম্পু ও কন্ডিশনার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন বাড়িতে ঘ্রাণহীন সাবান ডিটারজেন্ট ও এয়ার ফ্রেশনার ব্যবহার করুন ঘরের দরজাজানালা যতক্ষণ সম্ভব খুলে রাখুন কর্মস্থলে কোন সহকর্মীর পারফিউমে আপনার সমস্যা হলে নিজের ডেস্কে একটি ছোট ফ্যান চালাতে পারেন আপনার যদি প্রায়ই মাথাব্যথা হয় তাহলে খেয়াল করুন যে আপনার নিচের সময়গুলোতে মাথাব্যথা শুরু হয় কি নাআকাশ মেঘলা হলে বাতাসে আর্দ্রতা বেশি থাকলে গরম পরলে বা তাপমাত্রা বাড়তে থাকলে ঝড় হলেবায়ুচাপের পরিবর্তনের কারণে আবহাওয়ার পরিবর্তন হয় এই পরিবর্তন মস্তিষ্কে রাসায়নিক ও বৈদ্যুতিক পরিবর্তন ঘটায় যার ফলে স্নায়ু উত্তেজিত হয়ে মাথাব্যথা হয়কীভাবে এর চিকিৎসা করবেনআমরা তো আর আবহাওয়া পরিবর্তন করতে পারি না তবে আপনি আবহাওয়ার পূর্বাভাস জেনে আপনার মাথাব্যথা হবে কি না সেটা ধারণা করতে পারেন আর সেই অনুযায়ী মাথাব্যথা রোধে ২১ দিন আগেই একটি ব্যথানাশক ওষুধ বা পেইনকিলার খেয়ে নিতে পারেন রাতে ঘুমের মধ্যে কেউ কেউ দাঁতে দাঁত ঘষেন চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় একে বলা হয় ব্রাক্সিজম (bruxism) এর ফলে চোয়ালের পেশির সংকোচন হয় ফলে একটা ভোঁতা ধরনের মাথাব্যথা হয়কিভাবে এর চিকিৎসা করবেনদাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঘুমের মধ্যে দাঁতকে সুরক্ষিত রাখার জন্য আপনাকে সঠিক মাপের মাউথ গার্ড (mouth guard) বানিয়ে নিতে হবে উজ্জ্বল ও ঝলমলে আলো – বিশেষ করে তা যদি দ্রুত জ্বলতে আর নিভতে থাকে তাহলে মাইগ্রেনের ব্যথা শুরু হতে পারে এর কারণ হল উজ্জ্বল ও মিটমিট করতে থাকা আলো মস্তিষ্কে বিশেষ কিছু রাসায়নিক পদার্থের ক্ষরণ বাড়িয়ে দেয় যার ফলে মস্তিষ্কের মাইগ্রেনের কেন্দ্রটি সচল হয়ে যায়কীভাবে এর চিকিৎসা করবেনচোখে আলোর তীব্রতা কমাতে সানগ্লাসের ব্যবহার খুবই কার্যকর আপনি ঘরেবাইরে সব জায়গায় এটি পরতে পারেন পোলারাইজড লেন্সও ঝলমলে আলোর তীব্রতা কমাতে সাহায্য করে কর্মস্থলে আপনার মনিটরের উজ্জ্বলতার মাত্রা ঠিক করে নিন অথবা ঝলমলে আলো কমায় এমন গ্লেয়ার স্ক্রিন (glare screen) ব্যবহার করুন অফিসে কিছু লাইট বন্ধ করে দিতে পারেন বা সেগুলোকে অন্য কোথাও সরিয়ে ফেলতে পারেন যদি সেটা সম্ভব না হয় তাহলে অফিসে আপনার বসার জায়গাটি বদলে ফেলুন টিউবলাইট ও ফ্লু্রোসেন্ট লাইট (fluorescent lighting) বেশি মিটমিট করে তাই সম্ভব হলে এগুলোর বদলে অন্য ধরনের লাইট ব্যবহার করুন চিজ কিংবা ডার্ক চকলেট এর মত লোভনীয় খাবার হতে পারে আপনার মাথাব্যথার কারণ এই ব্যাপারে খেয়াল রাখুন এসব খাবারে কিছু রাসায়নিক পদার্থ থাকে যার কারণে মাইগ্রেন অ্যাটাক শুরু হয় এগুলো ছাড়া আরও যেসব খাবারের কারণে মাইগ্রেন হয় তার মধ্যে রয়েছেপ্রক্রিয়াজাত মাছ ও মাংস ডায়েট কোমল পানীয়কীভাবে এর চিকিৎসা করবেনমাইগ্রেনের কারণগুলো লিখে রাখার জন্য একটি ডায়েরি রাখুন কোনো খাবারের কারণে মাথাব্যথা হচ্ছে সন্দেহ হলে তা কয়েক মাসের জন্য খাওয়া বন্ধ রেখে দেখুন মাথাব্যথা আগের চেয়ে কমে কি না কোন বিশেষ খাবার বন্ধ করার ব্যপারে আপনার মনে সন্দেহ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন বা একজন রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ানের কাছে যান নিয়মিত খাবার খান কারণ কোন বেলার খাবার বাদ পড়লেও মাথাব্যথা শুরু হতে পারে অনেক পুরুষ ও নারীর জন্য যৌনমিলনের সময় প্রচণ্ড উত্তেজনার কারণে হওয়া মাথাব্যথা একটি চরম বাস্তব ও পীড়াদায়ক সমস্যাডাক্তাররা ধারণা করেন যে এই মাথাব্যথার কারণ হল মাথা ও ঘাড়ের মাংসপেশিতে অতিরিক্ত চাপ সৃষ্টি হওয়া এটা যৌন মিলনের যেকোন পর্যায়ে হতে পারে এবং কয়েক মিনিট থেকে এক ঘন্টা পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারেকীভাবে এর চিকিৎসা করবেনএই মাথাব্যথা অস্বস্তিকর হলেও তেমন ক্ষতিকর নয় আর এমনটাও নয় যে এটি থাকলে আপনাকে যৌন সহবাস এড়িয়ে চলতে হবে মাথাব্যথা রোধ করতে কয়েক ঘন্টা আগে একটি ব্যথানাশক ওষুধ খেয়ে নিন আইসক্রিমে কামড় দেওয়ার সাথে সাথে কি আপনি কপালে তীক্ষ্ণ ছুরির আঘাতের মত ব্যথা অনুভব করেন উত্তর যদি হ্যাঁ হয় তাহলে আপনার আইসক্রিম থেকে মাথাব্যথা (Icecream Headache) হয় যার কারণ হল মুখের ভেতরে উপরের তালু ও গলার ভেতরের দিক দিয়ে ঠাণ্ডা খাবারের চলাচল বরফঠাণ্ডা পানীয় থেকেও একই রকম সমস্যা হতে পারে বিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথার মধ্যে সবচাইতে বেশি দেখা যায় টেনশন টাইপ মাথাব্যথা দৈনন্দিন জীবনে যে মাথাব্যথা আমরা স্বাভাবিক ধরে নেই এটি মূলত সেই মাথাব্যথাবিভিন্ন ধরনের মাথাব্যথার মধ্যে সবচাইতে বেশি দেখা যায় টেনশন টাইপ মাথাব্যথা দৈনন্দিন জীবনে যে মাথাব্যথা আমরা স্বাভাবিক ধরে নেই এটি মূলত সেই মাথাব্যথা মাথার দুপাশেই একটা স্থায়ী ব্যথা অনুভূত হতে পারে এছাড়াও ঘাড়ের মাংসপেশিতে টানটান লাগতে পারে এবং চোখের পেছনে একটা চাপ চাপ ভাব হতে পারেতবে সাধারণত এই মাথাব্যথাটি আপনার প্রতিদিনের কাজে ব্যাঘাত ঘটানোর মত তীব্র হয় নাএই ব্যথা ৩০ মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত থাকতে পারে তবে মাঝে মধ্যে ব্যথাটি কিছু দিন স্থায়ী হতে পারেএই মাথাব্যথা কাদের হয়বেশির ভাগ মানুষই জীবনে কোন না কোন সময়ে এই ধরণের মাথাব্যথায় ভোগে যেকোন বয়সেই এই মাথাব্যথা হতে পারে তবে টিনেজ বয়সী ছেলেমেয়ে এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মাঝে বেশি দেখা যায় পুরুষদের তুলনায় নারীদের মাঝে এই মাথাব্যথা বেশি হয়ে থাকেযদি কোন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের মাঝে এই মাথাব্যথা টানা ৩ মাস (ন্যূনতম) আর প্রতিমাসে ১৫ বারের বেশি দেখা দেয় তবে সেটাকে ক্রনিক টেনশন টাইপ মাথাব্যথা বলে এই ধরণের মাথাব্যথা কদাচিৎ হলে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন নেই তবে যদি এক সপ্তাহে বেশ কয়েকবার দেখা দেয় অথবা যদি খুব তীব্র হয় তাহলে একজন ডাক্তারের সহায়তা নিবেনডাক্তার আপনাকে মাথাব্যথা সম্পর্কে প্রশ্ন করবেন আপনার পারিবারিক স্বাস্থ্য ইতিহাস খাওয়াদাওয়ার অভ্যাস জীবনধারা সম্পর্কেও তিনি জানতে চাইতে পারেন এ তথ্যগুলো আপনার মাথাব্যথার ধরন নির্ণয়ে ডাক্তারকে সাহায্য করবেকখন দ্রুত হাসপাতালে যাবেন নিচের লক্ষণগুলো থাকলে মাথাব্যথার পেছনে অন্য কোন গুরুতর সমস্যা লুকিয়ে থাকতে পারে তাই কিছু পরীক্ষা এবং দ্রূত চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে ১মাথায় গুরুতর আঘাত পেলে (যেমন কোন দুর্ঘটনার বা কোথাও পরে যাওয়ার কারণে) ২মাথাব্যথা হঠাৎ শুরু হলে এবং শুরুতেই ব্যথার তীব্রতা অনেক বেশি হলে ৩মাথাব্যথা হঠাৎ শুরু হলে এবং পূর্বে কখনো এমন তীব্র মাথাব্যথা অনুভব না করে থাকলে ৪প্রচণ্ড মাথাব্যথার সাথে নিচের কোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যাবেন কথা বলতে কিংবা কিছু মনে করতে হঠাৎ অসুবিধা হলে হাত বা পা দুর্বল বা অবশ হয়ে আসলে কথা বলার সময়ে জড়িয়ে আসলে দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেললে ঝিমিয়ে পরলে অথবা অসংলগ্ন আচরণ করলে গায়ে জ্বর আসলে কাঁপুনি হলে ঘাড় শক্ত হয়ে গেলে অথবা চামড়ায় র‍্যাশ (ফুসকুড়ি) উঠলে চোখের সাদা অংশ লাল হয়ে গেলে খিঁচুনি হলে অজ্ঞান হয়ে পরলে ৫এছাড়াও প্রচণ্ড মাথাব্যথার সাথে নিচের কোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যাবেন এই লক্ষণগুলি মাথা এবং ঘাড়ের রক্তনালীর প্রদাহের কারণে দেখা দিতে পারে সেক্ষেত্রে জরুরী চিকিৎসা প্রয়োজন হয় খাওয়ার সময় চোয়ালে ব্যথা হলে চোখে ঝাপসা দেখলে অথবা একটার জায়গায় দুটো দেখলে মাথার তালুতে চাপ দিয়ে ব্যথা অনুভব করলে টেনশন টাইপ মাথাব্যথা হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ চিকিৎসাবিজ্ঞানে এখনো স্পষ্ট হয় নি কিন্তু কিছু বিষয় জানা গেছে যেগুলো টেনশন টাইপ মাথাব্যথা সৃষ্টিতে ভূমিকা রাখে যেমনমানসিক চাপ ও উদ্বেগ চোখ কুঁচকে দেখা অস্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গি যেমন কুঁজো হয়ে বসাক্লান্তিঅনিয়মিত খাদ্যাভ্যাস ব্যায়াম বা শারীরিক কাজের স্বল্পতা উজ্জ্বল সূর্যের আলোআওয়াজ বা কোলাহল নির্দিষ্ট কিছু ঘ্রাণটেনশন টাইপ মাথাব্যথা অন্য কোন রোগের উপসর্গ নয় এই মাথাব্যথা নিজেই একটা রোগ একে এক প্রকারের প্রাথমিক মাথাব্যথা বলা হয় অন্যান্য প্রাথমিক মাথাব্যথার উদাহরণ হল ক্লাস্টার মাথাব্যথা ও মাইগ্রেন এই মাথাব্যথা প্রাণঘাতী নয় ব্যথানাশক ওষুধ ও দৈনন্দিন জীবনে কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে এটা সাধারণত কমিয়ে আনা যায়দৈনন্দিন জীবনে কী পরিবর্তন আনবেন যদি আপনার মাথাব্যথা দুশ্চিন্তার কারণে হয়ে থাকে তবে মানসিক প্রশান্তি আনে এমন কিছু কাজ তা কমিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে যেমনযোগ ব্যায়ামম্যাসাজব্যায়াম কপালে ঠান্ডা কাপড় রাখা কিংবা গলার পেছনে হাল্কা গরম কাপড় ধরে রাখাব্যথানাশক ওষুধব্যথানাশক ওষুধ যেমন প্যারাসিটামল বা আইবুপ্রোফেন মাথাব্যথা কমাতে সাহায্য করে মাঝে মধ্যে এসপিরিন ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকেগর্ভাবস্থায় ব্যথানাশক ওষুধ হিসেবে প্যারাসিটামল সবচাইতে ভালো ডাক্তারের পরামর্শ ব্যতীত এই সময়ে আইবুপ্রোফেন সেবন করবেন না ১৬ বছরের কম বয়সীদের এসপিরিন সেবন করানো উচিত নয় ব্যথানাশক ওষুধ জনিত মাথাব্যথাএকটানা অনেকদিন (সাধারণত ১০ দিন বা তার অধিক সময়) ব্যথানাশক ওষুধ সেবন করলে মাথাব্যথা হতে পারে অতিরিক্ত ওষুধ সেবন করার কারণে এই মাথাব্যথা সৃষ্টি হয় আবার এমনও হতে পারে ওষুধ বন্ধ করলে মাথাব্যথা শুরু হয় কারণ আপনার শরীর ওষুধে অভ্যস্ত হয়ে গেছেডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী বহুদিন ব্যথানাশক ওষুধ খাওয়ার পর আপনার যদি মাথাব্যথা হয় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন নিজে নিজে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ওষুধ খাওয়া বন্ধ করবেন না আপনি যদি খুব ঘনঘন টেনশন টাইপ মাথাব্যথায় ভোগেন তাহলে একটি ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন কখন কোন অবস্থায় আপনার মাথাব্যথা শুরু হচ্ছে এতে করে মাথাব্যথা শুরু হওয়ার কারণ সনাক্ত করতে সুবিধা হতে পারে সেই অনুযায়ী আপনার খাদ্যাভ্যাস বা দৈনন্দিন জীবনে পরিবর্তন এনে ঘনঘন মাথাব্যথা থেকে পরিত্রাণ পেতে পারেনআপনার মাথাব্যথা যদি মানসিক চাপ আর দুশ্চিন্তা সংক্রান্ত হয় তবে নিয়মিত ব্যায়াম এবং মানসিক প্রশান্তি আনে এমন কাজ আপনার জন্য উপকারী হতে পারে অস্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গি পরিহার করা পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া এবং যথেষ্ট পরিমাণে পানি খাওয়া আপনার জন্য সহায়ক হতে পারে বেশিরভাগ শিশু এবং টিনেজ বয়সী ছেলেমেয়ে বছরে অন্তত একবার মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয় এই মাথাব্যথা বড়দের মাথাব্যথা থেকে খানিকটা ভিন্ন তাই দেখা যায় মাবাবারা এ সমস্যাটা লক্ষ্য করেন নাবেশিরভাগ শিশু এবং টিনেজ বয়সী ছেলেমেয়ে বছরে অন্তত একবার মাথাব্যথায় আক্রান্ত হয় এই মাথাব্যথা বড়দের মাথাব্যথা থেকে খানিকটা ভিন্ন তাই দেখা যায় মাবাবারা এ সমস্যাটা লক্ষ্য করেন নাবাচ্চাদের ক্ষেত্রে মাইগ্রেন এবং অন্যান্য মাথাব্যথা বড়দের তুলনায় কম সময়ের জন্য স্থায়ী হয় বাচ্চাদের মাথাব্যথা হঠাৎ করেই শুরু হয় এবং এর ফলে বাচ্চা দ্রুত ফ্যাঁকাসে ও অবসন্ন হয়ে পরে এছাড়াও বাচ্চারা বমিবমি ভাব ও বমি করতে পারে তবে বাচ্চারা বেশ দ্রুতই সেরে উঠে কিছু ক্ষেত্রে দেখা যায় যে মাথাব্যথা ৩০ মিনিটের মধ্যেই চলে গিয়েছে এবং বাচ্চা স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে এমনকি সে বাইরে খেলাধুলাও করে এমনভাবে যেন কিছুই হয়নিবাচ্চাদের মাথাব্যথা তাদের পেটেও প্রভাব ফেলতে পারে তাই সাধারণত পেটব্যথাও হয়ে থাকে প্রায়সই বাচ্চাদের মাথাব্যথা হয় যখন তারা দুপুরের খাবার খায় না কিংবা সারা দিনে পরিমাণ মত পানি পান করে না তাই এই ধরণের মাথাব্যথা প্রতিকারের সবচেয়ে ভালো উপায় হলো বাচ্চাদের নিয়মিত খাবার খাওয়ানো পানি পান করানো এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করা খেলাধুলা বাচ্চাদের মাথাব্যাথার সৃষ্টি করতে পারে এর সম্ভাব্য কারণ হল খেলাধুলার ফলে ডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতা হওয়া এবং রক্তের সুগার লেভেলে পরিবর্তন আসা খেলার আগে ও পরে বেশি করে পানি খাওয়া গ্লুকোজ নেয়া মাথাব্যাথা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারেনিয়মিত খাবারের সাথে মধ্য সকাল (সকাল ও দুপুরের মাঝামাঝি সময়) এবং মধ্য বিকালে (দুপুর ও সূর্যাস্তের মাঝামাঝি সময়) হাল্কা নাস্তা এক্ষেত্রে উপকারী হতে পারে মাঝেমধ্যে বাচ্চাদের মানসিক ও আবেগজনিত সমস্যা থেকেও মাথাব্যথা হতে পারে বিভিন্ন মানসিক পীড়ন সৃষ্টিকারী পরিস্থিতি যেমন বিদ্যালয়ে মানসিক উৎপীড়নের শিকার হওয়া বাবামায়ের মাঝে বিরোধ ইত্যাদির ফলে বাচ্চাদের মাথাব্যথার সমস্যা শুরু হতে পারেমাথাব্যথার বিস্তারিত ডায়েরিতে লিখে রাখুন বাচ্চার মাথাব্যথার বিস্তারিত একটি ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন বাচ্চা যদি একটু বড় হয় তাহলে সে নিজেই ডায়েরি লিখতে পারে মাথাব্যথার নির্দিষ্ট কারণ বের করার এটি একটি ভালো উপায়ডায়েরিতে কী লিখবেন কখন মাথাব্যথা হয় সেটা লিখে রাখুন এছাড়াও মাথাব্যথা শুরু হওয়ার সময়ে স্বাভাবিকের চেয়ে ভিন্ন কিছু ঘটে বা করে থাকলে সেটা লিখে রাখুন আপনার যদি মনে হয় কোন কিছু এই মাথাব্যথার সাথে সম্পৃক্ত সেটাও লিখে রাখবেনএই তথ্যগুলোর কিছু উদহরন হচ্ছে অনিয়মিত খাবার কোন নির্দিষ্ট ধরণের খেলাধুলা রাত জাগা বা কোন ধরণের কোন মন খারাপ করার বা মানসিক চাপ ফেলার ঘটনা যেমন স্ট্রেস্ফুল মানসিক চাপ সৃষ্টিকরে এমন পরীক্ষা বা বাবামাবন্ধুবান্ধবের সাথে ঝগড়াডায়েরি লেখাটি চালিয়ে যাবেন কয়েক মাস হয়ে গেলে আপনার সন্তানের সাথে ডায়েরিটি পড়ুন মাথাব্যথা হওয়ার সম্ভাব্য কারণগুলো সনাক্ত করতে পারছেন কি না দেখুনসম্ভাব্য কারণগুলো সনাক্ত করে আগামী কয়েক মাস আপনার বাচ্চাকে একটি একটি করে সেগুলো থেকে বিরত রাখুন লক্ষ্য রাখবেন সম্ভাব্য কারণ গুলি থেকে কোন কাজ এড়িয়ে গেলে মাথাব্যথা কমে যায় কি না কিছু সাধারণ পদক্ষেপ আপনার বাচ্চাকে মাথাব্যথা বা মাইগ্রেনের সময় সহায়তা করতে পারে যেমননিঃশব্দ ও অন্ধকার রুমে শুয়ে থাকাকপালে অথবা চোখের উপর ঠান্ডাআর্দ্র কাপড় দিয়ে রাখা ধীরে ধীরে গভীর নিঃশ্বাস নেয়া ঘুমিয়ে যাওয়া কারণ ঘুম মাথাব্যথা দ্রুত কমিয়ে আনতে সাহায্য করে খাবার খাওয়া বা তরল কিছু পান করা (তবে ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় পরিহার করবেন)যদি আপনার মনে হয় বাচ্চার পেইনকিলারে (ব্যথানাশক ওষুধ) ব্যথা কমে যাবে তাহলে নিয়ম মেনে নিরাপদ পরিমাণে তাকে ওষুধ খাইয়ে দিন প্যারাসিটামল ও আইবুপ্রোফেন দুইটি ওষুধই বাচ্চাদের মাথাব্যথার ক্ষেত্রে কার্যকর ও নিরাপদ তবে বাচ্চাদের ক্ষেত্রে ট্যাবলেটের বদলে সিরাপ খাওয়াটা সহজতর শরীরে হরমোন এর পরিবর্তনের কারণে অনেক নারী মাথাব্যথার শিকার হনশরীরে হরমোন এর পরিবর্তনের কারণে অনেক নারী মাথাব্যথার শিকার হনঅনেকে মাইগ্রেন (এক প্রকার মাথাব্যথা) এর সাথে তাদের মাসিক বা রজঃস্রাবের একটি সম্পর্ক লক্ষ্য করেন মাসিকের সময়কালীন এই মাথাব্যথা প্রায়ই বেশ গুরুতর রূপ ধারন করে মাসিক শুরু হওয়ার ২ দিন আগে অথবা মাসিকের প্রথম ৩ দিনে এই মাথাব্যথার সূত্রপাত ঘটতে পারে নারীর শরীরে এই সময়টাতে এস্ট্রোজেন নামক হরমোনের পরিমাণ কমে যায় যার ফলে এই মাথাব্যথা আরম্ভ হয় মাসের অন্যান্য সময়ে হয়ে থাকা মাইগ্রেনের তুলনায় এই সময়কার মাইগ্রেন সাধারণত বেশি দুঃসহ হয় এবং এই ব্যথা পরের দিন ফিরে আসার সম্ভাবনাও বেশিমাসিক ছাড়াও অন্যান্য কারণে এই প্রকার হরমোনজনিত মাথাব্যথা হতে পারে কারণগুলো হলোজন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি (কম্বাইন্ড ওরাল কন্ট্রাসেপ্টিভ পিল) – এই বড়ি খাওয়ার ফলে কারো কারো মাথাব্যথা কমে যায় আবার কারো কারো ক্ষেত্রে আগের তুলনায় আরো ঘনঘন মাথাব্যথা হয় বিশেষ করে যে সপ্তাহে তারা পিল বা বড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকেন এবং এস্ট্রোজেন নামক হরমোনের পরিমাণ কমে যায় রজোবন্ধ বা মেনোপজ রজোবন্ধের সময় যত ঘনিয়ে আসে মাথাব্যথা ততই যন্ত্রণাদায়ক হতে থাকে এমন হওয়ার পেছনে মূলত দুটি কারণ রয়েছে এক রজোবন্ধের আগের সময়টায় মাসিক আরো ঘনঘন হয় দুই এই সময়ে নারীর শরীরে হরমোনের পরিবর্তন হয় গর্ভাবস্থা – সন্তান গর্ভে ধারণের প্রথম কয়েক সপ্তাহে মাথাব্যথা তীব্র হয়ে উঠে এই ব্যথা সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের ৬ মাসে কমে আসে অথবা একদমই চলে যায় আর এই মাথাব্যথা বাচ্চার কোন ক্ষতি করে না মাসিকের সাথে আপনার মাথাব্যথার আদৌ সম্পর্ক আছে কি না এই ব্যাপারে জানতে কমপক্ষে ৩ মাস একটি ডায়েরিতে মাসিক চক্র এবং মাথাব্যাথার সকল তথ্য লিখে রাখুন যদি আপনার মাথাব্যথার সাথে সত্যিই মাসিকের সম্পর্ক থাকে তাহলে ডায়েরির মাধ্যমে জানা যাবে যে মাসিক চক্রের ঠিক কোন পর্যায়ে মাথাব্যথার সূত্রপাত ঘটেছে এই মাথাব্যথা মোকাবেলায় আপনি নিজে যা করতে পারেনডায়েরির মাধ্যমে যদি জানতে পারেন যে মাসিক শুরু হবার ঠিক আগে আপনার মাথাব্যথা হয় তাহলে আপনি এই কাজ গুলো করতে পারেনঘনঘন অল্প পরিমাণে কিছু খেতে থাকবেন যাতে আপনার রক্তে শর্করা ভালো পরিমাণে থাকে এক বেলা খাবার না খেলে বা অনিয়মিত খেলে মাথাব্যথা হতে পারে রাতে ঘুমানোর আগে হাল্কা কিছু খাবেন এবং অবশ্যই সকালের নাস্তা করবেন নিয়মিত ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলুন ঘুমের পরিমাণ খুব বেশি বা খুব অল্প যাতে না হয় মানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন তা যদি সম্ভব না হয় মানসিক চাপ মোকাবেলার কিছু উপায় অবলম্বন করুন যেমন নিয়মিত ব্যায়াম মাইগ্রেনের চিকিৎসা মাসিকের সময় মাইগ্রেনের জন্য ডাক্তার আপনাকে কিছু ওষুধ দিতে পারেন এসব ওষুধে হরমোন না থাকলেও এগুলো মাইগ্রেন ঠেকাতে পারে যেমন ট্রিপট্যান মেফেনামিক অ্যাসিড ইত্যাদিকোন বিরতি ছাড়া জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি যদি মনে হয় জন্ম নিয়ন্ত্রণ বড়ি নেওয়ার সাথে আপনার মাথাব্যথার সম্পর্ক আছে তাহলে ডাক্তারকে জানাবেনযে সপ্তাহে আপনি বড়ি খাওয়া থেকে বিরত থাকেন সেই সময়ে যদি মাথাব্যথা হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শে কোন বিরতি ছাড়া কয়েক পাতা বড়ি খেতে পারেন তখন আপনার শরীরে এস্ট্রোজেনের পরিমাণ হঠাৎ করে কমে যাবে নাহরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি মেনোপজ ঘনিয়ে আসার সময় নারীর শরীরে হরমোনের পরিবর্তন হয় যার ফলে মাইগ্রেন সহ নানান ধরনের মাথাব্যথার উপদ্রব বেড়ে যায়হট ফ্লাশ (হঠাত করে চরম তাপ অনুভব করা যা সারা শরীরে ছড়িয়ে যায়) অতিরিক্ত ঘাম ইত্যাদি কমিয়ে ফেলতে সহায়তা করতে পারে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপিতবে আপনি যদি মাইগ্রেনে ভোগেন ট্যাবলেটের তুলনায় আপনার জন্য প্যাচ অথবা জেল হিসেবে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি নেয়া শ্রেয় ট্যাবলেটের তুলনায় এগুলো হরমোনের পরিমাণ অধিক স্থিতিশীল রাখে এবং মাইগ্রেন শুরু করে কম মানসিক অবসাদ মন খারাপ ও ডিপ্রেশন তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা তবে আমরা মাঝে মাঝে এই পার্থক্য ধরতে পারি না মানসিক অবসাদকে ইংরেজিতে লো মুড (low mood) বলা হয় অধিকাংশ মানুষই মাঝে মাঝে মানসিক অবসাদে ভোগে তবে সেটা যদি আপনার জীবনযাপনে বাধা সৃষ্টি করে তবে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন যা আপনাকে ভালো থাকতে সাহায্য করবেমানসিক অবসাদ মন খারাপ ও ডিপ্রেশন তিনটি ভিন্ন ভিন্ন অবস্থা তবে আমরা মাঝে মাঝে এই পার্থক্য ধরতে পারি না মানসিক অবসাদকে ইংরেজিতে লো মুড (low mood) বলা হয় অধিকাংশ মানুষই মাঝে মাঝে মানসিক অবসাদে ভোগে তবে সেটা যদি আপনার জীবনযাপনে বাধা সৃষ্টি করে তবে কিছু পদক্ষেপ নিতে পারেন যা আপনাকে ভালো থাকতে সাহায্য করবেমানসিক অবসাদের লক্ষণসমূহমন খারাপ থাকা উদ্বিগ্ন বা আতংকিত থাকা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্লান্ত বোধ করা বা ঘুমাতে না পারা রাগান্বিত বা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়া আত্মবিশ্বাসের ঘাটতিমানসিক অবসাদ সাধারণত কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহের মধ্যে ভালো হয়ে যায় আপনার যদি দিনের বেশিরভাগ সময় ধরেই মানসিক অবসাদ থাকে আর ২ সপ্তাহ ধরে প্রায় প্রতিদিনই এমন লাগতে থাকে থাকে তবে এটি বিষন্নতা বা ডিপ্রেশনের লক্ষণ হতে পারেবিষন্নতার অন্যান্য লক্ষণসমূহ হলজীবনের কোন কিছুই উপভোগ্য মনে না হওয়া নিরাশ হয়ে পড়া দৈনন্দিন কাজকর্মে মনোযোগ দিতে না পারা আত্মহত্যার চিন্তা বা নিজের ক্ষতি করার ইচ্ছা আপনার অনুভূতিগুলো সম্পর্কে কোন বন্ধু পরিবারের সদস্য ডাক্তার বা সাইকোলজিস্টের সাথে কথা বলুন আপনাকে বিচলিত করছে এমন সমস্যা সমাধান করুন প্রয়োজনে ঘুমের পরিমাণ বৃদ্ধি করতে পারেন আত্মসম্মান বাড়ানোর উপায় সম্বন্ধে জানুন একই রকম সমস্যার সম্মুখীন মানুষদের সাথে পরামর্শ করুন তাদের অভিজ্ঞতা আপনাকে সাহায্য করতে পারে মনোযোগী হওয়ার (mindfulness) অনুশীলন করুন যা আপনাকে শেখাবে অতীত বা ভবিষ্যৎ নিয়ে আটকে না থেকে বর্তমান মুহূর্তে কীভাবে মনোনিবেশ করা যায়মানসিক সুস্থতা নিয়ে বিভিন্ন অডিও গাইড শুনুন (আমরা পরিকল্পনা করছি এ বিষয়ে ভিডিও বানানোর আপাতত অন্যান্য উৎস থেকে সাহায্য নিন)যা যা করবেন নাঃ অনেক কাজ একত্রে করার চেষ্টা করবেন না ছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন যা আপনি সহজেই পূরণ করতে পারবেন যে বিষয়গুলো আপনার নিয়ন্ত্রণে নেই সে সকল বিষয়ে মনোযোগ না দিয়ে নিজেকে ভালো রাখার চেষ্টায় আপনার সময় ও শক্তি ব্যয় করুন নিজেকে একা ভাববেন না অধিকাংশ মানুষই কখনো না কখনো মানসিক অবসাদ অনুভব করে মানসিক অবসাদ থেকে মুক্তির জন্য ধূমপান জুয়া খেলা বা নেশা করা থেকে বিরত থাকুন এগুলো আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের অবনতি ঘটাতে পারে ২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে মানসিক অবসাদ থাকলে নিজে নিজে মানসিক অবসাদ সামলাতে হিমশিম খেলে নিজে থেকে যা চেষ্টা করছেন তা কাজ না করলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটাই উপযুক্ত মনে করলেকখন দ্রুত হাসপাতালে যাবেন আপনি বা আপনার পরিচিত কারো তৎক্ষণাত সাহায্য লাগলে আপনি যদি নিজের শরীরের কোন ক্ষতি করে থাকেন যেমন অধিক পরিমাণে ওষুধ সেবন করে বা অন্য কোন উপায়ে নিজের ক্ষতি করামানসিক স্বাস্থ্যের জরুরি অবস্থা কে শারীরিক স্বাস্থের জরুরি অবস্থার ন্যায়ই গুরুত্বের সাথে দেখতে হবে মানসিক অবসাদ অনুভব করার অনেক ধরনের কারণ থাকতে পারে কোন কষ্টদায়ক ঘটনা বা অভিজ্ঞতা থেকে মন খারাপ বা আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দিতে পারে মাঝে মাঝে আপাতদৃষ্টিতে নির্দিষ্ট কোন কারণ ছাড়াই মানসিক অবসাদের সৃষ্টি হতে পারে আপনি যদি মানসিক অবসাদের কারণটি ধরতে পারেন তবে তা নিয়ন্ত্রণ করা সহজ হতে পারেমানসিক অবসাদ সৃষ্টি করে এমন কিছু কারণের উদাহরণ হলকাজ অতিরিক্ত কাজের চাপ অনুভব করা বেকারত্ব বা চাকরি থেকে অবসর পরিবার সম্পর্কের টানাপোড়েন বিবাহ বিচ্ছেদ কারো দেখভাল করার দায়িত্ব অর্থনৈতিক সমস্যা অপ্রত্যাশিত খরচ বা ঋণ স্বাস্থ্য অসুস্থতা দুর্ঘটনা বা প্রিয়জন হারানোর শোকএমনকি জীবনের গুরুত্বপূর্ণ ঘটনাসমূহ যেমন নতুন বাড়ি কেনা সন্তানের জন্ম বা বিবাহের পরিকল্পনা করাও দুঃখের অনুভূতি সৃষ্টি করতে পারে নারীদের মাসিক বা পিরিয়ডের সময়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ঘটনাটি বেশ কমন তাই অনেকেই বিষয়টি স্বাভাবিক ধরে নেন কিন্তু এই সমস্যাটি দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত রক্তপাতের চিকিৎসা না নিলে তা স্বাভাবিক জীবনযাপনকে ব্যাহত করতে পারেনারীদের মাসিক বা পিরিয়ডের সময়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের ঘটনাটি বেশ কমন তাই অনেকেই বিষয়টি স্বাভাবিক ধরে নেন কিন্তু এই সমস্যাটি দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত রক্তপাতের চিকিৎসা না নিলে তা স্বাভাবিক জীবনযাপনকে ব্যাহত করতে পারেএছাড়াও এটি অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতা সৃষ্টি করতে পারে রক্তশূন্যতার কারণে দুর্বলতা থেকে শুরু করে বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে যা ভবিষ্যতে জটিল আকার ধারণ করতে পারে তাই পিরিয়ড চলাকালীন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের সমস্যা থাকলে সঠিক সময়ে চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা জরুরিমাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের পেছনে সবসময় নির্দিষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না কিন্তু ফাইব্রয়েড বা এন্ডোমেট্রিয়োসিসের মতো জরায়ু ও ডিম্বাশয়ের কিছু রোগের কারণে এই সমস্যা হতে পারে তাই অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের লক্ষণ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষানিরীক্ষা করিয়ে চিকিৎসা শুরু করা উচিত চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে ঔষধ জন্মনিয়ন্ত্রণে ব্যবহৃত কিছু পদ্ধতি ও বিভিন্ন অপারেশন অতিরিক্ত রক্তক্ষরণকে নির্দিষ্ট সংজ্ঞা দেওয়া কঠিন কারণ একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম লক্ষণ দেখা দেয় একজনের জন্য যা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বলে মনে হয় তা হয়তো আরেকজনের জন্য স্বাভাবিকমাসিক সাধারণত ২৭ দিন বা গড়ে ৫ দিন স্থায়ী হয় বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রে মাসিক চলাকালে গড়ে ৬৮ চা চামচের কাছাকাছি রক্তক্ষরণ হয় ১৬ চা চামচ বা ৮০ মিলিলিটার পর্যন্ত রক্তপাতকে স্বাভাবিক ধরা হয়মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের লক্ষণপ্রতি মাসিকে যদি—৮০ মিলিলিটার বা এর অধিক রক্তক্ষরণ হয় অথবা মাসিক ৭ দিনের বেশি স্থায়ী হয় অথবা দুটো ঘটনাই ঘটেতাহলে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে বলে ধরে নেওয়া হয়তবে সাধারণত রক্তপাতের পরিমাণ মেপে দেখার প্রয়োজন পড়ে না বেশিরভাগ নারীরই মাসিকের সময় কতটুকু রক্তপাত তাদের জন্য স্বাভাবিক সেই বিষয়ে ধারণা থাকে রক্তক্ষরণের পরিমাণে কোনো পরিবর্তন হলে তারা বিষয়টি খেয়াল করতে পারেনসহজে বোঝার সুবিধার্থে নিচের চারটি ব্যাপার ঘটছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখুন—১) প্রত্যেক ১২ ঘণ্টার মধ্যে স্যানিটারি পণ্য (ট্যাম্পন প্যাড) পরিবর্তনের প্রয়োজন হওয়া ২) ১ ইঞ্চির চেয়ে বড় বা কালচে রক্তের চাকা যাওয়া ৩) রক্ত গড়িয়ে বিছানায় বা কাপড়ে লেগে থাকা বিশেষ করে রাতে ঘুমের মধ্যে প্যাড ভিজে গিয়ে জামাকাপড় বা বিছানায় দাগ লাগা ৪) দুটি স্যানিটারি পণ্য একত্রে ব্যবহারের প্রয়োজন হওয়া যেমন ২টি প্যাড বা ১টি ট্যাম্পন ও ১টি প্যাডমনে রাখার সুবিধার্থে নিচের তালিকাটি ব্যবহার করা যেতে পারে প্রয়োজনে ডাক্তারের সাথে সাক্ষাতের সময়ে সাথে করে নিয়ে যেতে পারবেনবাম দিকের কলামের তথ্যগুলোর সাথে মিলিয়ে মাসিকের কোন দিন কয়টি প্যাড বা ট্যাম্পন ব্যবহার করছেন তা লিখে রাখুন এক্ষেত্রে রক্তক্ষরণ শুরুর দিনটিকে মাসিকের ১ম দিন ধরা হয়েছেপ্যাড বা ট্যাম্পন ১মদিন ২য়দিন ৩য়দিন ৪র্থদিন ৫মদিন ৬ষ্ঠদিন ৭মদিন ৮মদিন ৯মদিন ১০মদিন সামান্য ভেজা আংশিকভাবে ভেজা পুরোপুরি ভেজা রক্তের চাকা (হ্যাঁ/না)সামান্য ভেজা আংশিকভাবে ভেজা পুরোপুরি ভেজাকখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেযদি—রক্তক্ষরণের ব্যাপারে দুশ্চিন্তা হয় রক্তক্ষরণের পরিমাণ বেড়ে যায় মাসিক সংক্রান্ত অন্যান্য সমস্যা হয় যেমন পেট ব্যথা বা দুই মাসিকের মাঝে রক্তক্ষরণতাহলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ডাক্তার আপনার রোগ ও স্বাস্থ্যের সামগ্রিক তথ্য জেনে কিছু শারীরিক পরীক্ষা করবেন প্রয়োজনে তিনি রক্ত পরীক্ষাসহ অন্যান্য পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিবেন পিরিয়ডের সময়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয় এমন নারীদের অর্ধেকের ক্ষেত্রেই সুনির্দিষ্ট কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না তবে বেশ কয়েকটি রোগ ও কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি এই সমস্যার পেছনে দায়ী হতে পারেজরায়ুর ভেতরের প্রাচীরকে এন্ডোমেট্রিয়াম বলা হয় মাসিক চলাকালীন সময়ে যোনিপথ দিয়ে এই স্তরটি নির্গত হয় যা রক্তপাত হিসেবে দেখা যায় পরবর্তী কয়েকদিনের মধ্যে আবার নতুন স্তর তৈরি হয় এই প্রক্রিয়াটি চক্রাকারে চলতে থাকেইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন নামক দুটি হরমোনের ভারসাম্য এই চক্রকে নিয়ন্ত্রণ করে কোনো কারণে এই ভারসাম্য নষ্ট হলে এন্ডোমেট্রিয়াম মোটা হয়ে যেতে পারে তখন রক্তক্ষরণের পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায় বিভিন্ন রোগ ও চিকিৎসার ফলে মাসিক ভারী হয়ে যাওয়ার পেছনে এই হরমোন দুটির অসামঞ্জস্যতা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেঅতিরিক্ত মাসিকের পেছনে দায়ী কিছু রোগ ও চিকিৎসা পদ্ধতি হলো—জরায়ু ও ডিম্বাশয়ের রোগফাইব্রয়েড (Fibroid) এগুলো জরায়ুতে বেড়ে ওঠা এক ধরনের টিউমার এসব টিউমার সাধারণত ক্যান্সারে রূপ নেয় না ফাইব্রয়েড থাকলে মাসিকের সময়ে পেট ব্যথা অতিরিক্ত রক্তক্ষরণসহ বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে এন্ডোমেট্রিয়োসিস (Endometriosis) এই রোগে জরায়ুর ভেতরের স্তরের মতো টিস্যু জরায়ুর বাইরে (যেমন ডিম্বনালী বা ডিম্বাশয়ে) প্রতিস্থাপিত হয় যদিও ব্যথাই এ রোগের প্রধান লক্ষণ তবে সাথে সাথে পিরিয়ডে ভারী রক্তপাতও হতে পারে এডেনোমায়োসিস এক্ষেত্রে এন্ডোমেট্রিয়ামের মতো টিস্যু জরায়ুর দেয়ালের ভেতরে ঢুকে যায় এর কারণে মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের পাশাপাশি পেট ব্যথাও হতে পারে পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ (PID) প্রজননতন্ত্রের ইনফেকশন থেকে জরায়ু ডিম্বনালী ও ডিম্বাশয়ে প্রদাহ হয় এই রোগে তলপেটে ব্যথা যৌন সহবাসের পরে কিংবা দুই মাসিকের মাঝে রক্তক্ষরণ যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব এবং উচ্চ শারীরিক তাপমাত্রার মতো লক্ষণ থাকতে পারে এন্ডোমেট্রিয়াল পলিপ এটি জরায়ুর ভেতর অথবা জরায়ুমুখের এক ধরনের প্রবৃদ্ধি এসব প্রবৃদ্ধি সাধারণত ক্যান্সারে রূপ নেয় না কিন্তু ভারী রক্তপাতের পেছনে দায়ী হতে পারে জরায়ুর ক্যান্সার একে এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারও বলা হয় লক্ষণগুলোর মধ্যে সবচেয়ে কমন হলো মাসিকের রাস্তা বা যোনিপথ দিয়ে অস্বাভাবিক রক্তক্ষরণ বিশেষত মেনোপজ বা মাসিক স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যাওয়ার পরে এটি বেশি দেখা যায় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) এটি একটি পরিচিত রোগ এই রোগে ডিম্বাশয়ের স্বাভাবিক কাজ ব্যাহত হয় ফলে মাসিক অনিয়মিত হয় এবং মাসিক পুনরায় শুরু হওয়ার পরে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণে বিশেষ সতর্কতা গর্ভবতী অবস্থায় যোনিপথ দিয়ে রক্তক্ষরণ শঙ্কার কারণ হতে পারে এক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরিঅন্যান্য অসুস্থতারক্ত জমাট বাঁধা সংক্রান্ত রোগ যেমন ভন উইলিব্র্যান্ড ডিজিজ (Von Willebrand disease) থাইরয়েডের রোগ হাইপোথাইরয়েডিজম হলো থাইরয়েড গ্রন্থির একটি রোগ যেখানে গ্রন্থিটি পর্যাপ্ত হরমোন নিঃসরণ করতে ব্যর্থ হয় ফলে ক্লান্তি ওজন বৃদ্ধি ডিপ্রেশন ও মাসিকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের মতো সমস্যা দেখা দেয় ডায়াবেটিসঔষধ ও চিকিৎসা পদ্ধতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াকিছু ঔষধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় পিরিয়ডে ভারী রক্তপাত হয় যেমন—আইইউডি (Intrauterine Contraceptive Device) বা কপার টি এটি একটি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি জরায়ুতে কপার টি প্রবেশ করানোর পরে প্রথম তিন থেকে ছয় মাস পিরিয়ডের সময়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হতে পারে মাসিকের সময়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ বন্ধ করার বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণ রোগীর স্বাস্থ্যের সার্বিক অবস্থা ও পছন্দসহ বিভিন্ন বিষয় বিবেচনা করে ডাক্তার সবচেয়ে উপযুক্ত চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ধারণ করবেনঅতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে অনেকের আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা হয়ে থাকে রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এটি সনাক্ত করা যায় আয়রনের অভাবজনিত রক্তস্বল্পতা থাকলে আয়রন ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয়পিরিয়ডে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে—ঔষধ ও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিইন্ট্রাইউটেরাইন সিস্টেম (IUS) এটি ছোট প্লাস্টিকের তৈরি একটি যন্ত্র যা জরায়ুতে প্রবেশ করানো হয় এটি প্রজেস্টোজেন নামক হরমোন নিঃসৃত করার মাধ্যমে পিরিয়ডের সময়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের পরিমাণ কমিয়ে আনে হরমোনযুক্ত ঔষধ কম্বাইন্ড ওরাল কন্ট্রাসেপটিভ পিল (জন্মনিয়ন্ত্রক বড়ি) ও সাইক্লিকাল প্রোজেস্টোজেন পিল অন্যান্য ঔষধ ট্রানেক্সামিক এসিড ও ননস্টেরয়েডাল অ্যান্টি ইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগ (NSAIDs)অপারেশনএন্ডোমেট্রিয়াল অ্যাব্লেশন এক্ষেত্রে জরায়ুর ভেতরের এন্ডোমেট্রিয়াম নামক প্রাচীরকে পাতলা করা সরিয়ে ফেলা বা নষ্ট করে ফেলা হয় মায়োমেকটমি এক্ষেত্রে জরায়ুর প্রাচীর থেকে ফাইব্রয়েড সরিয়ে ফেলা হয় ইউটেরাইন আর্টারি এম্বোলাইজেশন এক্ষেত্রে ফাইব্রয়েডে রক্ত সরবরাহকারী রক্তনালী আটকে দেওয়া হয় ফলে ফাইব্রয়েড সংকুচিত হয়ে যায় হিস্টেরেকটমি এই অপারেশনের মাধ্যমে জরায়ু ফেলে দেওয়া হয় গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হতে পারে যোনিপথে রক্তপাত সবসময়ই কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ না হলেও এটি কখনো কখনো মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতার লক্ষণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হতে পারে যোনিপথে রক্তপাত সবসময়ই কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ না হলেও এটি কখনো কখনো মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতার লক্ষণ হতে পারেঅল্প কিংবা বেশি—যেই পরিমাণ রক্তপাতই হোক না কেন দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান[১] স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা ডাক্তারের চেম্বারের দূরত্ব বেশি হলেও যোনিপথে রক্তপাত হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা করুন এসময়ে সবচেয়ে আরামদায়ক যানবাহনটি বেছে নিতে চেষ্টা করবেন এসময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ কারণ কখনো কখনো এমন কিছু কারণে যোনিপথে রক্তপাত হয় যা আপনার ও গর্ভের শিশুর জীবন বিপন্ন করতে পারে ডাক্তার আপনার সাথে কথা বলে এবং শারীরিক পরীক্ষা করে যোনিপথে রক্তপাতের কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন এসময়ে তিনি মাসিকের রাস্তা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন প্রয়োজনে আলট্রাসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন এগুলো রক্তপাতের কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে যোনিপথে রক্তপাত হওয়া বেশ কমন প্রতি ৪ জন গর্ভবতীর মধ্যে ১ জনের এসময়ে যোনিপথে রক্তপাত হয়[২] অনেক ক্ষেত্রেই এটা গুরুতর সমস্যার কারণ নয়এসময়ে সাধারণত হালকা রক্তপাত হয়ে থাকে তবে কিছু ক্ষেত্রে ভারী রক্তপাতও হতে পারে—যা অধিক শঙ্কার কারণ গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে যাদের যোনিপথ দিয়ে ভারী রক্তপাত হয় তাদের গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি সাধারণের তুলনায় তিনগুণ বেশি[৩]গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে যোনিপথে রক্তপাতের কিছু কারণ—১ ইমপ্ল্যান্টেশন জনিত রক্তপাতমায়ের পেটে ভ্রূণ বড় হতে হতে পূর্ণাঙ্গ শিশুতে রূপ নেয় এই ভ্রূণ যখন গর্ভাবস্থার শুরুতে জরায়ুতে প্রথমবারের মতো নিজের জায়গা করে নেয় সেই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ইমপ্ল্যান্টেশন ইমপ্ল্যান্টেশনের সময়ে যোনিপথে হালকা বা ছোপ ছোপ রক্তপাত হতে পারেযে সময়টায় আপনার মাসিক হওয়ার কথা সাধারণত তার কাছাকাছি সময়ে এমন হালকা রক্তপাত হতে দেখা যায় ফলে এটাকে অনেকে ভুলে মাসিকের রক্তপাত মনে করতে পারেন এক্ষেত্রে নিশ্চিত হওয়ার উপায় হলো প্রেগন্যান্সি টেস্ট করাউল্লেখ্য সবার ক্ষেত্রেই ইমপ্ল্যান্টেশনের সময়ে রক্তপাত হয় না এসময়ে রক্তপাত হওয়া কিংবা না হওয়া—দুটোই সাধারণত আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ২ গর্ভপাত বা মিসক্যারেজগর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভের শিশুর মৃত্যু হলে সেটিকে গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ বলে[৪] গর্ভপাত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের মধ্যে ঘটে দুঃখজনকভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব গর্ভপাত প্রতিরোধ করা যায় না গর্ভপাতের অন্যতম লক্ষণ হলো যোনিপথে রক্তপাত হওয়াযোনিপথে রক্তপাতের পাশাপাশি গর্ভপাতের অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে— তলপেটে ব্যথা ও কামড়ানো বা খিঁচ ধরা যোনিপথ দিয়ে স্রাব জাতীয় তরল বের হওয়া যোনিপথ দিয়ে টিস্যু বা মাংসের মতো দলা অংশ বের হয়ে আসা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলো (যেমন বমি বমি ভাব ও স্তনে ব্যথা) আর অনুভব না করা গর্ভপাতের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তার দেখানপড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা৩ এক্টোপিক প্রেগন্যান্সিমায়ের ডিম্বাণু ও বাবার শুক্রাণুর মিলনের ফলে শিশুর ভ্রূণ সৃষ্টি হয় এই ভ্রূণই বড় হতে হতে পূর্ণাঙ্গ শিশুতে রূপ নেয় স্বাভাবিক প্রেগন্যান্সিতে ভ্রূণটি জরায়ুর ভেতরে জায়গা করে নেয় তবে কোনো কারণে ভ্রূণটি জরায়ুর বাইরে (যেমন ডিম্বনালীতে) স্থাপিত হলে সেই অবস্থাকে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বলে[৫]বাইরে স্থাপিত হওয়ার ফলে ভ্রূণটি সাধারণত বড় ও পরিণত হতে পারে না এই অবস্থাতেও যদি ভ্রূণটি বেড়ে উঠতে থাকে তাহলে ডিম্বনালী অথবা অন্য অঙ্গ ফেটে গর্ভবতী মায়ের মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তাই দেরি না করে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির সঠিক চিকিৎসা নেওয়া খুবই জরুরিএক্টোপিক প্রেগন্যান্সির লক্ষণগুলো সাধারণত গর্ভধারণের ছয় সপ্তাহের দিকে প্রকাশ পায় যার মধ্যে অন্যতম হলো যোনিপথে রক্তপাত হওয়া এ ছাড়া অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— তলপেটের নিচের দিকে ব্যথা এই ব্যথা যেকোনো একপাশে হতে পারে যোনিপথ দিয়ে বাদামী রঙের পানির মতো তরল বের হওয়া কাঁধের আগায় ব্যথা অনুভব করা প্রস্রাবপায়খানা করার সময়ে অস্বস্তি হওয়া এসব লক্ষণের মধ্যে যেকোনোটি দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান৪ মোলার প্রেগন্যান্সিমোলার প্রেগন্যান্সি খুব বিরল এক্ষেত্রে গর্ভধারণের পরে গর্ভের শিশু ও গর্ভফুল বা অমরা স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠে না মোলার প্রেগন্যান্সি হলে গর্ভের শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয় নামোলার প্রেগন্যান্সির অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—অতিরিক্ত বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া গর্ভকালের তুলনায় পেটের আকার বেশি বড় হওয়াযোনিপথে রক্তপাত ছাড়াও গর্ভাবস্থায় এসব লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি৫ জরায়ুমুখের পরিবর্তন গর্ভকালীন হরমোনের তারতম্যের কারণে আপনার জরায়ুমুখে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হতে পারে যেমন জরায়ুমুখ নরম হয়ে যাওয়া এবং সেখানকার রক্তনালী ও রক্ত সরবরাহ বেড়ে যাওয়া এসব কারণে কখনো কখনো যোনিপথে রক্ত যেতে পারে যেমন কারও কারও ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় সহবাসের পরে যোনিপথে হালকা রক্তপাত দেখা যায়সাধারণত গর্ভাবস্থায় সহবাস করা নিরাপদ হলেও গর্ভাবস্থায় মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হলে সহবাস থেকে বিরত থাকুন যোনিপথে রক্তপাত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে আবারও নিরাপদে সহবাস করতে পারবেনপড়ুন গর্ভাবস্থায় সহবাসউল্লেখ্য সহবাস ছাড়াও গর্ভাবস্থায় কোনো কারণে মাসিকের রাস্তা পরীক্ষা করা হলেও যোনিপথে রক্তপাত হতে পারে৬ যোনিপথের ইনফেকশন কখনো কখনো যোনিপথে ইনফেকশনের কারণে লালচে স্রাব কিংবা রক্ত যেতে পারে ডাক্তার সাধারণত কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে ইনফেকশনের কারণ ও ধরন নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা দিবেন৭ অন্যান্য কারণ সাধারণ সময়ের মতো যোনিপথের রক্তপাতের কোনো কারণ থাকলে গর্ভাবস্থায় যোনিপথে রক্তপাত হতে পারে এসব কারণের মধ্যে রয়েছে—জরায়ুমুখের পলিপ ও ইনফেকশন[৬][৭] যৌনাঙ্গ যোনিপথ অথবা জরায়ুমুখে আঘাত পাওয়া যৌনাঙ্গ যোনিপথ অথবা জরায়ুমুখের ক্যান্সার[৮] প্রস্রাবের রাস্তা অথবা পায়খানার রাস্তা দিয়ে (যেমন পাইলস রোগে) রক্তপাত এসব ক্ষেত্রেও যোনিপথে রক্তপাত হচ্ছে বলে মনে হতে পারে রক্ত জমাট বাঁধাজনিত রোগপড়ুন গর্ভাবস্থায় পাইলস গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের মতো পরবর্তী মাসগুলোতেও জরায়ুমুখের পরিবর্তন যোনিপথের ইনফেকশন ও অন্যান্য কারণে যোনিপথে রক্তপাত হতে পারে তবে পরবর্তী মাসগুলোতে যোনিপথে রক্তপাত হওয়ার পেছনে মারাত্মক কোনো কারণ থাকতে পারে তাই রক্তক্ষরণ হলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান[৯] এই সময়ে যোনিপথে রক্তপাতের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—১ প্ল্যাসেন্টা বা গর্ভফুল ছিঁড়ে যাওয়া এটি একটি মারাত্মক সমস্যা যাকে ডাক্তারি ভাষায় প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশন বলা হয় প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল গর্ভের শিশুকে মায়ের দেহ থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে পাশাপাশি শিশুর দেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতেও সাহায্য করেকারও কারও ক্ষেত্রে প্লাসেন্টা গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পরে জরায়ুর দেয়াল থেকে ছিঁড়ে আলাদা হয়ে যেতে পারে এক্ষেত্রে সাধারণত একটানা তীব্র পেট ব্যথা হয়[১০] সাথে যোনিপথে ভারী রক্তপাত হয়উল্লেখ্য প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশনে কখনো কখনো যোনিপথে রক্তপাত নাও হতে পারে তবে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে থাকার কারণে মা ও শিশু উভয়ের জীবনই হুমকির মুখে পড়তে পারে তাই এমন কোনো লক্ষণ থাকলে দেরি না করে হাসপাতালে যাওয়া খুবই জরুরি২ প্লাসেন্টা প্রিভিয়া প্লাসেন্টা বা গর্ভফুলের অবস্থান সাধারণত জরায়ুর ওপরের অংশে থাকে কোনো কারণে যদি প্লাসেন্টা জরায়ুর নিচের দিকে থাকে তাহলে সেটিকে প্লাসেন্টা প্রিভিয়া বলে প্লাসেন্টা প্রিভিয়া হলে গর্ভফুল জরায়ুমুখের খুব কাছাকাছি সংযুক্ত থাকতে পারে এমনকি জরায়ুমুখকে ঢেকে রাখতে পারেসাধারণত গর্ভকালীন চেকআপের অংশ হিসেবে আলট্রাসানোগ্রাম করানোর সময়ে এটি ধরা পড়ে এক্ষেত্রে প্লাসেন্টা প্রিভিয়ার কারণে বেশ ভারী রক্তপাত হতে পারে—যা আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য খুবই ঝুঁকিপূর্ণ উল্লেখ্য প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশনে পেট ব্যথা একটি পরিচিত লক্ষণ তবে প্লাসেন্টা প্রিভিয়া হলে সাধারণত পেট ব্যথা হয় না[১১]প্লাসেন্টা প্রিভিয়া শনাক্ত হলে আপনাকে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গিয়ে চিকিৎসা নিতে হতে পারে এক্ষেত্রে সাধারণত সিজারিয়ান অপারেশনের মাধ্যমে সন্তান প্রসব করাতে হয়৩ ভাসা প্রিভিয়া এটি একটি বিরল সমস্যা যেখানে শিশুর রক্তনালীগুলো জরায়ুর মুখের ওপর দিয়ে যায় পানি ভাঙার সময়ে এই রক্তনালীগুলো ছিঁড়ে প্রচুর রক্তপাত হতে পারে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে শিশুর জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে৪ শো গর্ভাবস্থায় জরায়ুমুখে ছিপির মতো করে মিউকাস জমে থাকে প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার কিছু সময় আগে কিংবা প্রসবের সময়ে এই মিউকাস যোনিপথ দিয়ে বেরিয়ে যায় এটি কিছুটা রক্ত মিশ্রিত থাকে বলে সাধারণত গোলাপি রঙের আঠালো তরলের মতো দেখায় একেই ডাক্তারি ভাষায় শো বলা হয় এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসছে এটি দুশ্চিন্তার কারণ নয় এসময়ে সঠিক পরিকল্পনা অনুযায়ী প্রসবের জন্য প্রস্তুত হতে হবে গর্ভাবস্থায় যোনিপথে রক্তপাতের কারণ নির্ণয় করার জন্য ডাক্তার আপনার রক্তপাত নিয়ে কিছু প্রশ্ন করবেন তিনি আপনার পেলভিক পরীক্ষা বা তলপেট ও মাসিকের রাস্তা পরীক্ষা করতে পারেন এভাবে তিনি কতটুকু রক্ত যাচ্ছে কিংবা রক্তের উৎস কোথায় সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন[১২]গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহের পরে যোনিপথে রক্তপাত হচ্ছে এমন গর্ভবতীকে সাধারণত সরাসরি পেলভিক পরীক্ষা করা উচিত নয় পেলভিক পরীক্ষা করার আগে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে গর্ভবতীর প্লাসেন্টা প্রিভিয়া না থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া প্রয়োজনযোনিপথে রক্তপাতের কারণ নির্ণয়ে ডাক্তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন যেমন তলপেট অথবা মাসিকের রাস্তা দিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা এবং রক্ত পরীক্ষাহাসপাতালে যাওয়ার আগে ডাক্তারের সম্ভাব্য কিছু প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে রাখুন যেমন—আপনার শেষ মাসিকের তারিখ কবে ছিল আপনার গর্ভধারণের কত সপ্তাহ অথবা মাস চলছে এর আগে আপনি গর্ভধারণ করেছেন কি না করে থাকলে সেটায় কোনো সমস্যা বা জটিলতা ছিল কি না দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় ত্রৈমাসিক চললে আপনি বাচ্চার নড়াচড়া টের পান কি না রক্তপাতের সাথে ব্যথা আছে কি না তলপেটে কোনোরকম আঘাত পেয়েছেন কি না অন্যান্য কোনো সমস্যা (যেমন মাথা ঘুরানো কিংবা কাঁধে ব্যথা) আছে কি না গর্ভাবস্থায় আপনার যোনিপথে যেই পরিমাণ রক্তপাতই হোক না কেন দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যাবেনযোনিপথে অতিরিক্ত রক্তপাত হলে কিংবা এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ও প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশনের মতো জটিলতা থাকলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ অথবা গাইনি ইমারজেন্সিতে আপনার চিকিৎসা করা হবে সেক্ষেত্রে আপনার ও পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এবং আপনার শারীরিক অবস্থা দেখে সেই অনুসারে দ্রুত সঠিক চিকিৎসাটি বেছে নেওয়া হবেগুরুতর রক্তপাতের ক্ষেত্রে আপনার শরীরে রক্ত প্রদানের প্রয়োজন হতে পারে[১৩] তাই আপনার রক্তের গ্রুপের সাথে মিলে যায় এমন কেউ আশেপাশে থাকলে তাকে রক্তদানের জন্য প্রস্তুত থাকতে অনুরোধ করতে পারেনরক্তপাতের কারণ গুরুতর হলে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেওয়াই ভালো কেননা এতে ডাক্তার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আপনাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন এ ছাড়া হঠাৎ করে যদি জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাহলে তারা হয়তো তুলনামূলকভাবে দ্রুত আপনার উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারবেনআপনার লক্ষণগুলো যদি গুরুতর না হয় এবং বাচ্চা হওয়ার সময় এখনো অনেক দূরে থাকে তাহলে আপনাকে শুধুমাত্র পর্যবেক্ষণে রাখা হতে পারে এজন্য ডাক্তার আপনাকে বাড়িতে পাঠিয়ে ১–২ সপ্তাহ পর আবার দেখা করতে বলতে পারেন এসময়ের মধ্যে অনেকের যোনিপথে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়তবে প্রয়োজন মনে করলে ডাক্তার আপনাকে হাসপাতালে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দিতে পারেন হাসপাতালে কতদিন থাকতে হবে সেটা রক্তপাতের কারণ এবং আপনি কত সপ্তাহের গর্ভবতী—এমন কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করবেগর্ভবতীর রক্তের গ্রুপ যদি নেগেটিভ গ্রুপ হয় তাহলে যোনিপথে রক্তপাত হলে অ্যান্টি ডি নামের এক ধরনের বিশেষ ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে[১৪] নেগেটিভ রক্তের গ্রুপের মধ্যে রয়েছে A ve B ve AB ve ও O ve কিছু ক্ষেত্রে এই ইনজেকশন না দেওয়া হলে গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হতে পারে তাই ডাক্তার দেখানোর সময়ে অবশ্যই মনে করে গর্ভবতীর রক্তের গ্রুপের ফলাফল লেখা কাগজটি নিয়ে যাবেন সেই সাথে গর্ভের শিশুর বাবার রক্তের গ্রুপের কাগজ নিয়ে গেলে আরও ভালো হয় অ্যানিমিয়া অর্থ রক্তশূন্যতা শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে আয়রনের অভাবজনিত অ্যানিমিয়া (Iron Deficiency Anaemia) হয় সাধারণত গর্ভবতী অবস্থায় ও অন্য বিভিন্ন কারণে রক্তক্ষরণের ফলে দেহে আয়রনের ঘাটতি হয় বেশি বেশি আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আয়রনের অভাব পূরণ করা যায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ট্যাবলেট সেবনের মাধ্যমে আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতার চিকিৎসা করা সম্ভবঅ্যানিমিয়া অর্থ রক্তশূন্যতা শরীরে আয়রনের ঘাটতি হলে আয়রনের অভাবজনিত অ্যানিমিয়া (Iron Deficiency Anaemia) হয় সাধারণত গর্ভবতী অবস্থায় ও অন্য বিভিন্ন কারণে রক্তক্ষরণের ফলে দেহে আয়রনের ঘাটতি হয় বেশি বেশি আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার মাধ্যমে আয়রনের অভাব পূরণ করা যায় ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী আয়রন ট্যাবলেট সেবনের মাধ্যমে আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতার চিকিৎসা করা সম্ভব আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতার পাঁচটি অন্যতম লক্ষণ হলো—ক্লান্ত অনুভব করা শরীরের শক্তি কমে যাওয়া অথবা দুর্বল লাগা শ্বাস নিতে গিয়ে হাঁপিয়ে ওঠা বুক ধড়ফড় করা ত্বক ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়াআয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতার আরও কিছু লক্ষণ রয়েছে তবে এসব লক্ষণ উপরের পাঁচটি লক্ষণের মতো সচরাচর দেখা যায় না এবং গর্ভাবস্থার সাথে এসব লক্ষণের কোনো সম্পর্ক নেই এসব লক্ষণগুলো হলো—মাথাব্যথা মাথা বা কানের ভেতরে চিনচিনে ভনভনে বা হিস্ হিস্ আওয়াজ হওয়া (Tinnitus) খাবারের স্বাদ উদ্ভট লাগা শরীর চুলকানো জিহ্বায় ঘা হওয়া চুল পড়ে যাওয়া অখাদ্য জিনিস খাওয়ার ইচ্ছে হওয়া যেমন কাগজ পোড়ামাটির বাসন ও বরফের মতো কিছু খাওয়ার ইচ্ছে হওয়া অথবা খেয়ে ফেলা এই লক্ষণকে পিকা (Pica) বলা হয় ঢোক গিলতে কষ্ট হওয়া মুখের কোনায় যন্ত্রণাদায়ক ঘা বা আলসার হওয়া নখের আকৃতি চাচামচের মতো হয়ে যাওয়া রেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম (Restless Legs Syndrome)—এটি স্নায়ুতন্ত্রের এমন একটি রোগ যা পা দুটিকে নাড়ানোর অনিবার্য তাড়না সৃষ্টি করেছবি চাচামচের মত ভেতরের দিকে গর্ত হয়ে যাওয়া নখ একে চিকিৎসাবিজ্ঞানের ভাষায় বলা হয় কয়লোনিকিয়া (Koilonychia) যা আয়রনের অভাবজনিত অ্যানিমিয়া বা রক্তশূন্যতার লক্ষণ হতে পারে কৃতজ্ঞতা https//assetsnhsuk/আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি আপনি রক্তশূন্যতায় ভুগছেন কি না তা নিশ্চিত হওয়ার জন্য একটি সাধারণ রক্ত পরীক্ষাই যথেষ্ট গর্ভাবস্থায় আয়রনের অভাবজনিত অ্যানিমিয়া খুব কমন বেশিরভাগ গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে দেখা যায় ডায়েটে যদি আয়রন সমৃদ্ধ খাবারের পরিমাণ চাহিদার তুলনায় কম থাকে তাহলে সেটাই রক্তশূন্যতার পেছনে দায়ীপিরিয়ড বা মাসিকের সময়ে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের কারণে আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা হওয়াও বেশ কমন নির্দিষ্ট ঔষধ সেবনের মাধ্যমে মাসিকের সময়ের ভারী রক্তপাতের চিকিৎসা করা যায়পুরুষ ও মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া নারীদের ক্ষেত্রে আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা পাকস্থলী বা অন্ত্রে রক্তপাত হওয়ার একটি লক্ষণ হতে পারে এ ধরনের রক্তপাতের অন্যতম কারণগুলো হলো—নন স্টেরয়েডাল অ্যান্টিইনফ্ল্যামেটরি ড্রাগস (NSAIDs) সেবন যেমন আইবুপ্রোফেন ও অ্যাসপিরিন ঔষধগ্যাস্ট্রিক আলসারপ্রদাহের কারণে বৃহদান্ত্র তথা কোলন ফুলে যাওয়া (Colitis) খাদ্যনালীর প্রদাহ (Esophagitis) পাইলস বা অর্শ পাকস্থলী বা অন্ত্রের ক্যান্সার (তুলনামূলকভাবে বিরল)অন্য যেকোনো কারণে শরীর থেকে রক্তপাত হলে তা থেকেও শরীরে রক্তশূন্যতা দেখা দিতে পারে আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা সনাক্ত করতে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার পরে তিনি রোগীর জীবনধারা ও রোগবালাইয়ের ইতিহাস সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন করবেন রক্তশূন্যতার পেছনের কারণ স্পষ্ট না হলে তিনি কিছু পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন এসব পরীক্ষার উদ্দেশ্য লক্ষণগুলোর কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজনে রোগীকে একজন বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করা হতে পারেরক্তশূন্যতা সনাক্তের জন্য দেওয়া কিছু রক্ত পরীক্ষাডাক্তার আপনাকে প্রথমে ফুল ব্লাড কাউন্ট/কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট নামের পরীক্ষা করাতে দিবেন এটি সিবিসি নামে অধিক পরিচিত এই পরীক্ষার মাধ্যমে আপনার রক্তে লোহিত রক্তকণিকার পরিমাণ স্বাভাবিক কি না তা জানা যাবে পরীক্ষাটি করানোর আগে আপনার কোনো বিশেষ প্রস্তুতি নেওয়ার প্রয়োজন নেইসব ধরনের রক্তশূন্যতার মধ্যে আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতাই সবচেয়ে কমন অন্য কোনো কারণে (যেমন ভিটামিন বি ১২ অথবা ফোলেট এর অভাবে) রক্তশূন্যতা হচ্ছে কি না তা দেখার জন্যও সিবিসি পরীক্ষাটি বেশ কার্যকর রক্তশূন্যতার কারণ সনাক্ত হওয়ার পরে ডাক্তার কারণ অনুযায়ী রক্তশূন্যতা দূর করার সঠিক চিকিৎসা নির্ধারণ করবেনরক্তশূন্যতার ঔষধপরীক্ষার রিপোর্টে যদি লোহিত রক্ত কণিকার পরিমাণ স্বাভাবিকের চেয়ে কম আসে তাহলে ডাক্তার শরীরের আয়রনের ঘাটতি পূরণ করার জন্য আয়রন ট্যাবলেট বা বড়ি সেবনের পরামর্শ দিবেন এবং আয়রন ট্যাবলেট খাওয়ার নিয়ম বলে দিবেনএই ঔষধগুলো আপনাকে প্রায় ৬ মাস সেবন করতে হবে ঔষধ খাওয়ার পরপর কমলালেবুর রস বা লেবুর সরবত খেলে তা আপনার শরীরকে আয়রন শোষণে সহায়তা করতে পারেআয়রন ট্যাবলেট সেবনের ফলে কারো কারো ক্ষেত্রে কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া দেখা দিতে হতে পারে যেমন—কোষ্ঠকাঠিন্য কিংবা পাতলা পায়খানা পেট ব্যথা বুক জ্বালাপোড়া করা বা গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা (অ্যাসিডিটি) বমি বমি ভাব কালচে পায়খানা পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য আয়রন ট্যাবলেট খাবারের সাথে অথবা খাওয়ার ঠিক পরপরই সেবন করার চেষ্টা করুন তবে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলেও এই ঔষধ সেবন করা চালিয়ে যাওয়া খুব জরুরিচিকিৎসার মাধ্যমে রক্তে আয়রনের পরিমাণ স্বাভাবিকে ফেরত আসছে কি না জানতে ডাক্তার চিকিৎসা শুরু হওয়ার পরবর্তী কয়েক মাসে পুনরায় রক্ত পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন আয়রন ট্যাবলেট সংরক্ষণে সতর্কতা আয়রন ট্যাবলেট শিশুদের হাতের নাগালের বাইরে রাখুন শিশুদের ক্ষেত্রে এই ঔষধের ওভারডোজ হলে অর্থাৎ মাত্রাতিরিক্ত আয়রন ট্যাবলেট সেবন করে ফেললে—তা জীবনঘাতী হতে পারেরক্তশূন্যতার ঘরোয়া চিকিৎসা ও খাবারযদি খাবারের তালিকায় আয়রনযুক্ত খাবারের অভাব রক্তশূন্যতার পেছনে আংশিকভাবে দায়ী থাকে তাহলে ডাক্তার আয়রনসমৃদ্ধ কিছু খাবার বেশি করে খাওয়ার পরামর্শ দিবেনরক্তশূন্যতা দূর করার জন্য যেসব খাবার বেশী পরিমাণে খেতে হবে গাঢ় সবুজ শাকসবজি যেমন পালংশাক কচুশাক করলা পটল ও কাঁচকলা অধিক আয়রনযুক্ত শস্যদানা ফর্টিফাইড‌ সিরিয়াল (Cereals) ও পাউরুটি মাংস ডাল জাতীয় খাবার (শিম মটরশুঁটি ও বিভিন্ন ধরনের ডাল) রক্তশূন্যতা দূর করতে যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে নিচের তালিকায় খাবার ও পানীয়গুলো বেশি খেলে এগুলো শরীরের আয়রন শোষণের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়—চা ও কফি দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার ফাইটিক এসিড (Phytic Acid) সমৃদ্ধ খাবার যেমন গোটা বা হোলগ্রেইন খাদ্যশস্য (Wholegrain Cereals) এগুলো অন্যান্য খাবার ও ঔষধ থেকে শরীরের আয়রন শোষণের ক্ষমতা কমিয়ে দেয়প্রতিদিনকার খাবারের তালিকায় আয়রন সমৃদ্ধ খাবার অন্তর্ভুক্ত করতে না পারলে একজন রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নেওয়া যেতে পারে সারাবছর জুড়েই সর্দিকাশি ও ফ্লু এর সমস্যা হলেও ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বিশেষত শীত ও বসন্ত কালে সমস্যাগুলো বেড়ে যায়সারাবছর জুড়েই সর্দিকাশি ও ফ্লু এর সমস্যা হলেও ঋতু পরিবর্তনের সাথে সাথে বিশেষত শীত ও বসন্ত কালে সমস্যাগুলো বেড়ে যায়এসব রোগের চিকিৎসার জন্য সাধারণত ডাক্তারের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন হয় না কিছু উপদেশ মেনে চললে ঘরে বসেই নিজের যত্ন নেয়া যায় তা ছাড়া কিছু সতর্কতা অবলম্বন করলে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও কমানো যায় ফ্লু ও সাধারণ সর্দিকাশির লক্ষণ প্রায় একই রকম তবে সাধারণ সর্দিকাশির তুলনায় ফ্লু এর লক্ষণগুলোর তীব্রতা বেশি হতে পারে এবং সেরে উঠতেও বেশি সময় লাগতে পারে শিশুদের ক্ষেত্রে কখনো কখনো লক্ষণগুলো বড়দের তুলনায় বেশিদিন ধরে থাকতে পারেকীভাবে বুঝবেন আপনার ফ্লু হয়েছে না কি সর্দিকাশিএ ছাড়া ফ্লুতে শিশুদের ক্ষেত্রে জ্বরের পাশাপাশি ডায়রিয়া ও বমির সমস্যা বেশি দেখা যায় সেই সাথে শিশুর কান ব্যথা হতে পারে এবং চঞ্চলতা কমে যেতে পারেজ্বর নতুন করে একটানা কাশি হওয়া অস্বাভাবিক স্বাদগন্ধ পাওয়া অথবা স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলা কোভিড১৯ ইনফেকশন বা করোনার লক্ষণ হতে পারে কারণ ও লক্ষণে পার্থক্য থাকলেও ফ্লু ও সাধারণ সর্দিকাশির চিকিৎসা প্রায় কাছাকাছিঘরোয়া চিকিৎসাদ্রুত সর্দিকাশি ও ফ্লু সারাতে প্রাথমিকভাবে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন—বিশ্রাম নিন ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমান শরীর উষ্ণ রাখুন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন পানির পাশাপাশি তরল খাবারও উপকারী যেমন ফলের জুস চিড়া পানি ডাবের পানি স্যুপ ইত্যাদি পানিশূন্যতা এড়াতে এমন পরিমাণে তরল খাওয়া উচিত যেন প্রস্রাবের রঙ স্বচ্ছ অথবা হালকা হলুদ হয় গলা ব্যথা উপশমের জন্য লবণ মিশিয়ে কুসুম গরম পানি দিয়ে গড়গড়া করুন তবে ছোটো শিশুরা ঠিকমতো গড়গড়া করতে পারে না বলে তাদের ক্ষেত্রে এই পরামর্শ প্রযোজ্য নয় কাশি উপশমের জন্য মধু খেতে পারেন ১ বছরের কম বয়সী বাচ্চাদের জন্য এই পরামর্শ প্রযোজ্য নয়অনেকে ধারণা করেন যে ভিটামিন সি রসুন ও একানেশিয়া নামের হারবাল ঔষধ সর্দিকাশি প্রতিরোধে কিংবা সর্দিকাশি থেকে দ্রুত সেরে উঠতে সাহায্য করে তবে এই ধারণার পক্ষে তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নিফ্লু ও সর্দি কাশির ঔষধসাধারণ সর্দিকাশি সাধারণত কোনো ঔষধ ছাড়াই ৭–১০ দিনের মধ্যে সেরে যায় ফ্লুও সাধারণত দুই সপ্তাহের মধ্যে আপনাআপনি ঠিক হয়ে যায় তবে লক্ষণ উপশমে কিছু ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে যেমন—প্যারাসিটামল জ্বর ও ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন তবে প্যারাসিটামল সেবন চলাকালে অন্য কোনো ব্যথার ঔষধ কফ সিরাপ অথবা সর্দিকাশির হারবাল ঔষধ সেবনের বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে কারণ এসবের অনেকগুলোতে প্যারাসিটামল থাকে ফলে নিরাপদ মাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত পরিমাণে প্যারাসিটামল সেবন করার ঝুঁকি থাকেনাক বন্ধের ড্রপ এগুলোকে ন্যাসাল ডিকনজেসট্যান্ট বলা হয় নাক বন্ধ উপশমে এসব ড্রপ ব্যবহার করা যায় তবে টানা ১ সপ্তাহের বেশি ব্যবহার করবেন না তাতে নাক বন্ধের সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে ১ সপ্তাহেও উন্নতি না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন৬ বছরের কম বয়সী শিশুদের এসব ড্রপ দিবেন না ডাক্তারের পরামর্শে ৬–১২ বছর বয়সী শিশুদের এই ধরনের ড্রপ দেওয়া যেতে পারে সেক্ষেত্রেও সাধারণত পাঁচ দিনের বেশি দেয়া হয় নাকফ সিরাপ কাশি বেশি হলে সর্দিকাশির ঔষধ বা কফ সিরাপ ব্যবহার করা যেতে পারেঅ্যান্টিহিস্টামিন নাক থেকে পানি পড়া এবং হাঁচি কমানোর জন্য ডাক্তার এই ধরনের ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন এগুলো কারও কারও কাছে অ্যালার্জির ঔষধ হিসেবেও পরিচিতঅ্যান্টিভাইরাল সাধারণত ফ্লু এর চিকিৎসায় বিশেষ কোনো ঔষধের দরকার হয় না তবে যাদের ফ্লু এর তীব্র লক্ষণ দেখা দেয় এবং জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি তারা ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ সেবন করতে পারেন৷ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন ছাড়া শিশুদের কোনো ধরনের ঔষধ দিবেন না ১৮ বছরের কম বয়সী শিশুদের ফ্লু হয়েছে বলে সন্দেহ হলে তাদের অ্যাসপিরিন ও স্যালিসাইলেট যুক্ত সব ধরনের ঔষধ দেওয়া থেকে বিরত থাকুন স্যালিসাইলেট যুক্ত ঔষধের মধ্যে রয়েছে পিংকবিসমল পেপ্টো পেপ্টোফিট ও পেপ্টোসিড জাতীয় পেট খারাপের ঔষধঔষধ সেবনের পূর্বে সতর্কতাসব ধরনের ঔষধ সেবন করার আগেই সতর্কতা অবলম্বন করা উচিত লক্ষণ দেখা গেলেই হুট করে কোনো ঔষধ সেবন করলে ক্ষতিকর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারে সর্দিকাশির ঔষধ সেবনের ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো খেয়াল রাখুন—ঔষধ সেবনের আগে সেটির গায়ে লাগানো লেবেল দেখে নিবেন ঔষধের সাথে থাকা নির্দেশনাগুলো মেনে চলবেন অনেক সর্দিকাশির ঔষধের মধ্যে ব্যথানাশক ঔষধের উপাদান থাকে যেমন প্যারাসিটামল আইবুপ্রফেন ইত্যাদি সেক্ষেত্রে আলাদা করে ব্যথানাশক ব্যবহার করলে ঔষধের মাত্রা ক্ষতিকর পর্যায়ে চলে যেতে পারে গর্ভাবস্থায় অনেক ঔষধ সেবন করাই মা ও গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া গর্ভবতী মায়েদের যেকোনো ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকা উচিত দুই বছরের ছোটো শিশুদের সর্দিকাশির জন্য কোনো ঔষধ দেওয়া উচিত নয় শিশুদের অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধ দেওয়া উচিত নয়অ্যান্টিবায়োটিক কেন নয় সর্দিকাশি ও ফ্লু এর চিকিৎসায় অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর নয় কারণ সর্দিকাশি ও ফ্লু ভাইরাস বাহিত রোগ আর অ্যান্টিবায়োটিক ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে কাজ করে ভাইরাসের বিরুদ্ধে নয় তাই অযথা অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করলে অন্যান্য জটিলতা তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে উল্লেখ্য ফ্লু এর চিকিৎসায় ক্ষেত্রবিশেষে অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ ব্যবহৃত হতে পারে ডাক্তার আপনার লক্ষণের ওপর ভিত্তি করে ঔষধ সেবন করতে হবে কি না সেটি নির্ধারণ করবেন নিচের লক্ষণগুলো দেখা গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে—ফ্লু এর ক্ষেত্রে সাত দিনের বেশি এবং সর্দিকাশির ক্ষেত্রে তিন সপ্তাহের বেশি সময় ধরে লক্ষণ থাকলে তিন মাসের কম বয়সী শিশুর জ্বর আসলে অথবা খুব নিস্তেজ হয়ে পড়লে কিংবা যেকোনো বয়সী শিশুকে নিয়ে শঙ্কা থাকলে বয়স ৬৫ বছরের বেশি হলে কিংবা গর্ভবতী হলে দীর্ঘমেয়াদী স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে যেমন ডায়াবেটিস হৃদরোগ কিডনি রোগ ও ফুসফুসের রোগ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এমন চিকিৎসা নিলে যেমন কেমোথেরাপি ও লম্বা সময় ধরে স্টেরয়েড সেবন অনেক জ্বর আসলে অথবা জ্বরের সাথে কাঁপুনি থাকলেযেসব লক্ষণ দেখা দিলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে— শিশুদের ক্ষেত্রে খিঁচুনি ঠোঁট ও মুখ নীল হয়ে যাওয়া পানিশূন্যতা এর কিছু লক্ষণ হলো—৮ ঘন্টায় একবারও প্রস্রাব না হওয়া মুখ শুকিয়ে যাওয়া এবং কান্না করলে চোখে পানি না আসা ছোটো শিশুদের মাথার সামনের দিক বসে যেতে পারে সজাগ অবস্থাতেও পুরোপুরি সচেতন না থাকা এবং অন্যদের সাথে না মেশা দ্রুত শ্বাস নেওয়া অথবা শ্বাসকষ্ট হওয়া শ্বাসপ্রশ্বাসের সাথে পাঁজরের হাড় ভেতরে ঢুকে যাওয়া বুকে ব্যথা মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা ব্যথা এতটাই তীব্র হয় যে শিশু হাঁটাচলা করতে চায় না জ্বর ১০৪° ফারেনহাইট এর ওপরে চলে যাওয়া প্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে শ্বাসকষ্ট বুকে অথবা তলপেটে ক্রমাগত ব্যথা অথবা চাপ চাপ লাগা ক্রমাগত মাথা ঘোরানো বিভ্রান্তি ও ঝিমুনি খিঁচুনি প্রস্রাব না হওয়া মাংসপেশিতে তীব্র ব্যথা প্রচণ্ড দুর্বলতা ও অস্থিরতা কাশির সাথে রক্ত যাওয়া এ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদী অন্যান্য রোগের লক্ষণগুলো বেড়ে গেলে জ্বরকাশি কিছুটা কমার পরে আবার ফিরে আসলে অথবা হঠাৎ করে লক্ষণগুলো বেড়ে গেলে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিতে হবে এই রোগগুলো সহজেই একজন থেকে আরেকজনে ছড়াতে পারে তবে সহজ কিছু পদক্ষেপ দিয়ে তা ঠেকানো সম্বব ফ্লু এর ক্ষেত্রে প্রথম পাঁচ দিনে ইনফেকশন ছড়ানোর সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে সর্দিকাশিতে আক্রান্ত ব্যক্তির লক্ষণগুলো পুরোপুরি সেরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত অন্যদের মধ্যে জীবাণু ছড়াতে পারেপরিবার ও কর্মক্ষেত্রে রোগ ছড়ানো প্রতিরোধসম্ভব হলে কাজ থেকে ছুটি নিয়ে নিজের ঘরে থাকুন মানুষের সংস্পর্শে আসা হতে বিরত থাকুন ফ্লু হলে জ্বর ছেড়ে যাওয়ার পর অন্তত ২৪ ঘন্টা পার হওয়ার আগে পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ঘরের বাইরে যাবেন না এক্ষেত্রে জ্বর কমানোর ঔষধ খাওয়া ছাড়াই জ্বর চলে যাওয়া উচিত সুস্থ হওয়ার আগে পর্যন্ত জনসমাগম এড়িয়ে চলুন কারও সাথে হ্যান্ডশেক অথবা কোলাকুলি করা থেকে বিরত থাকুন বাইরে বের হলে মাস্ক ব্যবহার করুন হাঁচিকাশি দেওয়ার সময়ে অন্যদের থেকে দূরে সরে যান এবং টিস্যু দিয়ে নাক ও মুখ ঢাকুন ব্যবহারের পর টিস্যু ডাস্টবিনে ফেলে দিন হাতের কাছে টিস্যু না থাকলে কনুই এর ফাঁকে হাঁচিকাশি দিন হাঁচিকাশি দিয়ে সাথে সাথে হাত ধুয়ে ফেলুন দরজার হাতল মোবাইল ফোন ও শিশুদের খেলনার মতো দৈনন্দিন ব্যবহার্য্য জিনিসগুলো কিছুক্ষণ পর পর জীবাণুমুক্ত করুন বারবার সাবানপানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুনফ্লু ও সর্দিকাশি থেকে সুরক্ষাফ্লু ও সর্দিকাশি রোগে আক্রান্ত হওয়া থেকে বাঁচতে নিচের পাঁচটি উপায় অবলম্বন করুন—নিয়মিত কুসুম গরম পানি ও সাবান দিয়ে অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে ভালোভাবে হাত ধোয়ার অভ্যাস করুন যদি পানিসাবান হাতের কাছে না থাকে অ্যালকোহল জাতীয় হ্যান্ড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত পরিষ্কার করুন অপরিষ্কার হাতে চোখ নাক ও মুখ স্পর্শ করা থেকে বিরত থাকুন না হলে ভাইরাস শরীরে ঢুকে ইনফেকশন করতে পারে অসুস্থ মানুষের সংস্পর্শ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন তাদের ব্যবহৃত জিনিস ও বাসনপত্রও ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন ব্যায়াম করুন ও সুস্থ জীবনধারা মেনে চলুন সাধারণ সর্দিকাশির কার্যকর ভ্যাকসিন নেই তবে নিয়মিত ফ্লু এর ভ্যাকসিন নেওয়ার মাধ্যমে ফ্লু রোগটি প্রতিরোধ করা যায় প্রয়োজনবোধে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ফ্লু ভ্যাকসিন নিতে পারেন সর্দিকাশি সাধারণত ৭–১০ দিনের মধ্যে সেরে যায় তবে যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম কিংবা অ্যাজমার মতো শ্বাসপ্রশ্বাসের রোগ আছে তাদের সাধারণ সর্দিকাশি থেকেও নিউমোনিয়ার মতো জটিলতায় ভোগার সম্ভাবনা থাকেঅন্যদিকে ফ্লু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দুই সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায় তবে কারও কারও ক্ষেত্রে নিউমোনিয়াসহ নানান জটিলতা হতে পারে এমনকি কিছু জটিলতা থেকে মৃত্যু হতে পারেফ্লু এর জটিলতার মধ্যে রয়েছে—নিউমোনিয়া সাইনোসাইটিস কানের ইনফেকশন হার্টের প্রদাহ বা মায়োকার্ডাইটিস ব্রেইনে প্রদাহ বা এনসেফালাইটিস মাংসপেশির প্রদাহ ফুসফুস ও কিডনির মতো একাধিক অঙ্গের কাজ মারাত্মকভাবে বাধাগ্রস্ত হওয়া গুরুতর ইনফেকশন থেকে শরীরে সেপসিস নামক জীবনঘাতী প্রতিক্রিয়া তৈরি হওয়াএ ছাড়া দীর্ঘমেয়াদী রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের ফ্লু হলে সেটি রোগের তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে যেমন অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগীদের অ্যাজমার অ্যাটাক হতে পারে এবং হার্টের রোগীদের অবস্থার অবনতি হতে পারেযাদের জন্য ফ্লু বেশী ঝুঁকিপূর্ণযে কেউই ফ্লুতে আক্রান্ত হতে পারেন এবং ফ্লু সংক্রান্ত জটিলতায় ভুগতে পারেন তবে কিছু মানুষের ক্ষেত্রে ফ্লু হওয়ার পর ভোগার সম্ভাবনা বেশি যেমন—৬৫ বছর ও তদূর্ধ্ব বয়সী ব্যক্তি গর্ভবতী নারী পাঁচ বছরের কম বয়সী শিশু ইতোমধ্যে কোনো রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তি গর্ভাবস্থায় সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি সাদা স্রাব হওয়া স্বাভাবিক এতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই তবে কিছু ক্ষেত্রে সাদা স্রাব স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি সাদা স্রাব হওয়া স্বাভাবিক এতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই তবে কিছু ক্ষেত্রে সাদা স্রাব স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারেমেয়েদের যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা দিয়ে সাদা স্রাব যাওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা মাসিক শুরু হওয়ার ১–২ বছর আগে থেকেই সাদা স্রাব যাওয়া শুরু হয় এবং মেনোপজ হওয়ার আগ পর্যন্ত এটি চলতে থাকেএকেক জনের ক্ষেত্রে একেক পরিমাণে স্রাব যেতে পারে আবার একই ব্যক্তির মাসের একেক সময়ে একেক পরিমাণ স্রাব যেতে পারেপড়ুন মেয়েদের সাদা স্রাবসাধারণত মাসিকের ঠিক আগে স্রাব যাওয়া বেড়ে যায় এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াও বেশ স্বাভাবিক তবে কিছু ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক সাদা স্রাব হতে পারে গর্ভাবস্থায় প্রায় সবারই সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যায় এই বাড়তি সাদা স্রাব জীবাণুকে যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা থেকে জরায়ুতে উঠে আসতে বাধা দেয় ফলে গর্ভের সন্তান ইনফেকশন থেকে রক্ষা পায় গর্ভাবস্থার শেষের দিকে সাদা স্রাবের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়গর্ভাবস্থার একেবারে শেষ সপ্তাহের দিকে স্রাব জেলির মতো আঠালো হতে পারে এসময়ে স্রাবের রঙ হয় গোলাপী এই স্রাবকে ডাক্তারি ভাষায় শো বলা হয়জরায়ুমুখে থাকা আঠালো পদার্থ বা মিউকাস যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসার ফলে এই শো দেখা যায় এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে গর্ভবতী নারীর দেহ সন্তান প্রসবের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করছে প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার ঠিক আগের কয়েকদিন অল্প অল্প করে এরকম শো দেখা যেতে পারে স্বাভাবিক সাদা স্রাব পাতলা স্বচ্ছ ও বর্ণহীন অথবা দুধের মতো সাদা হয় এতে কোনো দুর্গন্ধ থাকে নাতবে সাদা স্রাবের সাথে নিচের পাঁচটি লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি—অস্বাভাবিক গন্ধ কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব সবুজ হলুদ লালচে অথবা ধূসর রঙের স্রাব যোনিপথের আশেপাশে ব্যথা অথবা চুলকানি প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হওয়া যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হওয়া লালচে হয়ে যাওয়া কিংবা চুলকানোএগুলো যোনিপথে ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়া একটি অন্যতম বিপদচিহ্ন এক্ষেত্রে দেরি না করে রোগীকে ডাক্তারের কাছে অথবা নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে গর্ভাবস্থায় মাসিকের রাস্তা দিয়ে একটু পরপর অথবা একটানা পানি ভাঙতে থাকলে রোগীকে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে এটি সময়ের আগেই প্রসব শুরু হয়ে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় ইনফেকশনগর্ভাবস্থায় যোনিপথে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে অস্বাভাবিক ধরনের সাদা স্রাব হতে পারে এটি অনেকের কাছে ঈস্ট ইনফেকশন নামেও পরিচিত এক্ষেত্রে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়—অতিরিক্ত পরিমাণে সাদা স্রাব যাওয়া এই স্রাব দেখতে দই অথবা পনিরের মতো এবং চাকা চাকা হয় তবে সাধারণত কোনো গন্ধ থাকে না যোনিপথের আশেপাশে প্রচুর চুলকানি ও জ্বালাপোড়া হওয়া প্রস্রাব ও সহবাসের সময়ে ব্যথা কিংবা অস্বস্তি হওয়াগর্ভাবস্থায় ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে ভয়ের কিছু নেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসা নিলে এটি সহজেই সেরে যায় এক্ষেত্রে ডাক্তার মাসিকের রাস্তায় ঢোকানোর ঔষধ বা ক্রিম দিতে পারেন সাধারণত চিকিৎসা শুরু করার ১–২ সপ্তাহের মধ্যেই এই ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন সেরে যায়সব ধরনের অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয় তাই নিজে নিজে ঔষধ কিনে চিকিৎসা শুরু করা যাবে নাসহজ কিছু উপদেশ মেনে চলার মাধ্যমে ঘরোয়াভাবেই এই ধরনের ইনফেকশন প্রতিরোধ করা যায় যেমন—সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা অন্তর্বাস পরা খুব টাইট বা আঁটসাঁট অন্তর্বাস ও পায়জামা না পরা যৌনাঙ্গ শুকনো ও পরিষ্কার রাখা যোনিপথে সুগন্ধি সাবানের ব্যবহার এড়িয়ে চলা যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তার ভেতরের অংশ পরিষ্কার রাখার জন্য শরীরের নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে এক্ষেত্রে বাইরে থেকে আলাদা কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয় না বরং সুগন্ধি সাবান কিংবা অন্য কিছু দিয়ে পরিষ্কার করতে গেলে হিতে বিপরীত হয়ে যোনিপথের ইনফেকশন হতে পারে গর্ভধারণের পর পরই অনেকের স্তনে হালকা ব্যথা বা চাপ চাপ লাগতে পারে এটি গর্ভাবস্থার খুবই কমন একটি লক্ষণ এ নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার কিছু নেই গর্ভাবস্থায় কিছু ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়ে আপনি অনেকাংশেই স্তনের ব্যথা কমিয়ে আনতে পারবেনগর্ভধারণের পর পরই অনেকের স্তনে হালকা ব্যথা বা চাপ চাপ লাগতে পারে এটি গর্ভাবস্থার খুবই কমন একটি লক্ষণ[এ নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার কিছু নেই গর্ভাবস্থায় কিছু ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়ে আপনি অনেকাংশেই স্তনের ব্যথা কমিয়ে আনতে পারবেন গর্ভধারণের ফলে শরীরে বিভিন্ন হরমোনের পরিমাণ ওঠানামা করে যেমন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন পাশাপাশি শরীরে রক্ত সরবরাহ বেড়ে যায়[২] এসব পরিবর্তনের প্রভাবে স্তন ও স্তনের বোঁটা স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে ফলে আপনার স্তনে ব্যথা হতে পারেএ ছাড়া শিশুর জন্মের পরে তার পুষ্টির চাহিদা পূরণের প্রস্তুতি হিসেবে গর্ভাবস্থায় আপনার স্তনে ফ্যাট বা চর্বি জমা হতে থাকে পাশাপাশি স্তনের ভেতরে থাকা দুধ তৈরির নালিকাগুলো প্রশস্ত হতে থাকে সব মিলিয়ে গর্ভাবস্থায় স্তনের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়একারণেও স্তনে ব্যথা হতে পারে স্তনে ব্যথার ধরন একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হতে পারে যেমন—স্তন ভারী অথবা চাপ চাপ লাগা টনটনে ব্যথা জ্বালাপোড়া খোঁচা খোঁচা বা শিরশিরে অনুভূতি[৫] ধারালো বা তীক্ষ্ণ ব্যথা পুরো স্তন জুড়ে ভোঁতা ধরনের ব্যথাস্তনের বোঁটা থেকে শুরু করে স্তনের যেকোনো অংশে এমনকি পুরো স্তনজুড়েও ব্যথা হতে পারে গর্ভাবস্থায় সাধারণত উভয় স্তনেই ব্যথা হয় তবে যেকোনো একটি স্তনেও ব্যথা হতে পারে উল্লেখ্য স্তনের ব্যথা কখনো কখনো বগল কাঁধ অথবা হাতে ছড়িয়ে পড়তে পারেতবে ব্যথার ধরন যেমনই হোক না কেন সেটা যদি আপনার জন্য খুব বেশি অস্বস্তির কারণ না হয় এবং আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত না করে তাহলে এই ব্যথা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেইব্যথার ধরনের পাশাপাশি ব্যথার তীব্রতাও একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হতে পারে এসময়ে আপনার স্তন হাত দিয়ে স্পর্শ করলে হালকা ব্যথা লাগতে পারে আবার অনেকের ক্ষেত্রে ব্রা পরলেই তীব্র ব্যথা শুরু হতে পারে স্তনে হালকা অথবা তীব্র ব্যথা হওয়া—দুটোই স্বাভাবিকগর্ভাবস্থায় স্তনের এই স্পর্শকাতরতা বা ব্যথার কারণে অনেক দম্পতি এসময়ে সহবাস এড়িয়ে চলেন তবে স্তনে ব্যথার ধরন ও তীব্রতা যদি আপনার জন্য অস্বস্তির কারণ না হয় তাহলে গর্ভাবস্থায় সহবাস চালিয়ে যেতে কোনো বাধা নেইপড়ুন গর্ভাবস্থায় সহবাস সাধারণত গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে অর্থাৎ প্রথম তিন মাসের মধ্যে স্তনে ব্যথা বা চাপ লাগার সমস্যাটা দেখা দেয় এমনকি গর্ভধারণের তৃতীয়চতুর্থ সপ্তাহ থেকেই এমন ব্যথা শুরু হয়ে যেতে পারে প্রথম তিন মাসের পরে কারও কারও ক্ষেত্রে এই ব্যথা কমে আসতে পারেগর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে আপনার স্তন শিশুকে দুধপান করানোর জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে থাকে তাই এসময়ে এসে আবার স্তনে ব্যথা শুরু হতে পারেএ ছাড়া শিশুর জন্মের পর তাকে দুধ খাওয়ানোর সময়টাতেও অনেকের স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগতে পারে[৬] বিশেষ করে স্তনের বোঁটায় ব্যথা হতে পারে এটাও খুবই কমন এ নিয়ে সাধারণত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই এরপরে সাধারণত স্তনের ব্যথা চলে যায়কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন যদি আপনার স্তনে অস্বাভাবিক ব্যথা হয় ব্যথা ক্রমেই বাড়তে থাকে কিংবা অনেকদিন ধরে ব্যথা হতে থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ব্যথা ছাড়াও স্তনে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে অস্বাভাবিক পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে— স্তনে অথবা বগলে চাকা বা দলার ন্যায় অনুভব করা স্তনের কোনো অংশ ফুলে যাওয়া স্তনে অস্বাভাবিক ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হওয়া স্তনের বোঁটা থেকে রক্ত পুঁজ কিংবা কোনো অস্বাভাবিক তরল নিঃসৃত হওয়া স্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া স্তনের চামড়ায় চুলকানি হওয়া অথবা তা লালচে হয়ে যাওয়া স্তনের চামড়ায় টোল বা গর্তের মতো হওয়া স্তনের আকারআকৃতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করা এসব লক্ষণের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হয়তো স্বাভাবিক তবে এগুলো স্তনের বিশেষ কোনো রোগ—এমনকি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে[৭] তাই অবহেলা না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়াই শ্রেয়[৮] স্তনের ব্যথা ও চাপ চাপ লাগার অনুভূতি আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত না করলে এই ব্যথা নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই গর্ভাবস্থায় স্তনে ব্যথা কমানোর জন্য সাধারণত ঔষধ খাওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চলার মাধ্যমেই এই ব্যথা অনেকাংশে কমানো যায় যেমন—ভালো সাপোর্টযুক্ত আরামদায়ক ব্রা ব্যবহার করবেন নিশ্চিত করতে হবে যে আপনি যেসব ব্রা ব্যবহার করছেন সেগুলো সঠিক সাইজের এবং খুব বেশি টাইট বা আঁটসাঁট না রাতে ঘুমানোর সময়ে নরম সুতি কাপড়ের স্পোর্টস ব্রা বা হুক ছাড়া ব্রা ব্যবহার করতে পারেন এতে শোয়ার সময়ে পাশ পরিবর্তন করলে যে ব্যথা হয় সেটি কমতে পারে বরফ বা ঠান্ডা কিছু (যেমন ফ্রোজেন মটরশুঁটি) একটা নরম ও মোটা সুতির গামছা কিংবা তোয়ালেতে জড়িয়ে স্তনে লাগাতে পারেন এতে ব্যথা কমে গিয়ে আরাম লাগতে পারে উল্লেখ্য একটানা ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে বরফ না লাগানোই শ্রেয় উষ্ণ বা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন এতেও কারও কারও ব্যথা উপশম হয় গর্ভাবস্থায় আরামদায়ক ও ঢিলেঢালা কাপড় পরার চেষ্টা করবেন এতে স্তনে চাপ কম পড়বে বেশি বেশি ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খাবেন এবং ক্যাফেইন জাতীয় খাবার ও পানীয়ের পরিমাণ কমিয়ে দিবেন কারও কারও ক্ষেত্রে এগুলো স্তনের ব্যথা কমাতে সহায়তা করে গর্ভাবস্থায় পরার উপযোগী নার্সিং ব্রা অথবা হুক ছাড়া আরামদায়ক সুতির ব্রা এসময়ে বেশি আরামদায়ক হতে পারে সম্ভব হলে ঘুমানোর সময়ে বিশেষ স্লিপিং ব্রা ব্যবহার করুন এ ছাড়া ব্যায়াম করার সময়ে ভালো সাপোর্টযুক্ত স্পোর্টস ব্রা ব্যবহার করবেন এগুলো বাড়ন্ত স্তনকে সাপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারেগর্ভাবস্থায় স্তনে ব্যথার ঔষধওপরের উপদেশগুলো মেনে চলার পরেও ব্যথা না কমলে প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনঅন্য যেকোনো ব্যথানাশক (যেমন ননস্টেরয়েডাল প্রদাহনাশক) ট্যাবলেট ক্রিম অথবা জেল ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন বিভিন্ন ব্যথানাশক ঔষধ আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো স্তনের পরিবর্তন শিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত তার যাবতীয় পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকে পায় এজন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার দেহ স্তনকে প্রস্তুত করতে থাকে ফলে পুরো গর্ভাবস্থা জুড়ে আপনার স্তনে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হতে থাকেগর্ভাবস্থার প্রথমদিকের লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো স্তনের পরিবর্তন শিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত তার যাবতীয় পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকে পায় এজন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার দেহ স্তনকে প্রস্তুত করতে থাকে ফলে পুরো গর্ভাবস্থা জুড়ে আপনার স্তনে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হতে থাকেগর্ভাবস্থায় স্তনে অনেকগুলো পরিবর্তন দেখা যেতে পারে তবে সবার ক্ষেত্রেই একই সময়ে এসব পরিবর্তন হবে—বিষয়টি এমন নয় তাই এসব পরিবর্তন নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না স্তনে সচরাচর যেসব পরিবর্তন দেখা যায় সেগুলো নিচে তুলে ধরা হয়েছে গর্ভাবস্থার শুরুর দিকের অন্যতম লক্ষণ হলো স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগা গর্ভকালীন হরমোনের ওঠানামা আর স্তনের ভেতরের বাড়ন্ত নালীর কারণে এমন হয় গর্ভাবস্থার চতুর্থ সপ্তাহ থেকেই এমন লক্ষণ দেখা দিতে পারে তবে অনেকের ক্ষেত্রে মাসিক শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগেও স্তনে ব্যথা হতে পারে[২] একারণে স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগলেও সেটা অনেকে গর্ভধারণের লক্ষণ হিসেবে খেয়াল নাও করতে পারেগর্ভাবস্থায় স্তনের ব্যথা একেকজনের কাছে একেকরকম মনে হতে পারে যেমন—স্তন ভারী অথবা চাপ চাপ লাগা স্তনে টনটনে ব্যথা বা শিরশির করার মতো অনুভূতি হওয়া[৩] পুরো স্তন জুড়ে ভোঁতা এক ধরনের ব্যথা হতে থাকা তীক্ষ্ণ ব্যথা হওয়াব্যথার তীব্রতাও মানুষভেদে কমবেশি হতে পারে এসময়ে আপনার স্তন হাত দিয়ে স্পর্শ করলে হালকা ব্যথা লাগতে পারে আবার অনেকের ক্ষেত্রে ব্রা পরলেই তীব্র ব্যথা শুরু হতে পারে প্রথম ত্রৈমাসিকে স্তনে হালকা অথবা তীব্র ব্যথা হওয়া—দুটোই স্বাভাবিকগর্ভাবস্থায় স্তনের এই স্পর্শকাতরতা বা ব্যথার কারণে অনেক দম্পতি এসময়ে সহবাস এড়িয়ে চলেন তবে স্তনে ব্যথার ধরন ও তীব্রতা যদি আপনার জন্য অস্বস্তির কারণ না হয় তাহলে গর্ভাবস্থায় সহবাস চালিয়ে যেতে কোনো বাধা নেইস্তনের ব্যথা ও চাপ চাপ লাগার অনুভূতি আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত না করলে এই ব্যথা নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই ব্যথা কমাতে স্তনকে ভালো সাপোর্ট দেয় এমন সঠিক মাপের ব্রা পড়ুনপ্রয়োজনে প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন এ ছাড়া কোনো কারণে ব্যথার ধরন আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হলে অথবা এই বিষয়ে দুশ্চিন্তা হলে ডাক্তার দেখিয়ে নিন গর্ভাবস্থায় সময়ের সাথে সাথে স্তনের বোঁটা আকারে বড় হতে থাকে পাশাপাশি রঙও গাঢ় হয় এ ছাড়া স্তনের ব্যথাও বিশেষত স্তনের বোঁটাতেই অনুভূত হয় গর্ভকালীন হরমোনের প্রভাবে শরীরের অন্যান্য স্থানের মতো স্তনের বোঁটাতেও রক্ত চলাচল বেড়ে যায় একারণে স্তনের বোঁটায় খোঁচা খোঁচা কিংবা শিরশিরে অনুভূতি হতে পারেস্তনের বোঁটার আশেপাশের গাঢ় রঙের জায়গাকে অ্যারিওলা বলে গর্ভাবস্থায় অ্যারিওলাতে আপনি ছোটো ছোটো দানা বা বিচির মতো লক্ষ করতে পারেনএমন দানা বা বিচি দেখা দিলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই এগুলো মূলত স্তনের বোঁটার চারপাশের এক ধরনের গ্রন্থির ফুলে ওঠা অংশএই গ্রন্থি তেল জাতীয় পদার্থ নিঃসরণ করে স্তনের বোঁটাকে শুষ্কতা থেকে বাঁচায় এবং সুস্থ রাখে৷ তাই এই ধরনের দানা বা বিচি দেখা দিলে তা গলিয়ে ফেলা বা চাপাচাপি করা থেকে বিরত থাকুন গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে অথবা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের শুরুতে আপনি আপনার স্তনের আকারে পরিবর্তন লক্ষ করবেন শিশুর জন্মের পরে তার পুষ্টির চাহিদা পূরণের প্রস্তুতি হিসেবে আপনার স্তনে এসময়ে ফ্যাট বা চর্বি জমা হতে থাকে পাশাপাশি স্তনের ভেতরে থাকা দুধ তৈরির নালিকাগুলো প্রশস্ত হতে থাকে সব মিলিয়ে গর্ভাবস্থায় স্তনের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়[৫][৬]স্তনের আকার বাড়ার সাথে সাথে ব্রা এর কাপ সাইজও সাধারণত বেড়ে যায় গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাসে আপনার ব্রা এর মাপ পুরো এক কাপ সাইজ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে[৭]ব্রা এর কাপ সাইজ কীভাবে মাপবেন ব্রা এর যেই অংশ স্তনকে ঢেকে রাখে সেটি হলো ব্রা এর কাপ আপনার জন্য সঠিক কাপ সাইজ হিসাব করতে প্রথমে স্তনের নিচের অংশ ইঞ্চি ফিতা দিয়ে মেপে নিন এটিকে আন্ডার বাস্ট বলে এরপর স্তনের সবচেয়ে বড় বা স্ফীত অংশ বরাবর ফিতা বসিয়ে আবার মাপুন এটিকে বাস্ট বলে ছবি বামে আন্ডারবাস্ট ও ডানে বাস্ট সাইজ মাপার পদ্ধতি এবার বাস্ট এর মাপ থেকে আন্ডার বাস্ট এর মাপ বিয়োগ করে এদের মধ্যে পার্থক্য বের করুন পার্থক্য কাপ সাইজ ১ ইঞ্চি এ ২ ইঞ্চি বি ৩ ইঞ্চি সি ৪ ইঞ্চি ডি সম্ভব হলে অবশ্যই কেনার আগে দোকানে ট্রায়াল দিয়ে ব্রা ঠিকমতো ফিট হয় কি না সেটি দেখে নিতে পারেন গর্ভাবস্থায় পরার উপযোগী নার্সিং ব্রা অথবা হুক ছাড়া আরামদায়ক সুতির ব্রা এসময়ে বেশি আরামদায়ক হতে পারে সম্ভব হলে ঘুমানোর সময়ে বিশেষ স্লিপিং ব্রা ব্যবহার করুন এ ছাড়া ব্যায়াম করার সময়ে ভালো সাপোর্টযুক্ত স্পোর্টস ব্রা ব্যবহার করবেন এগুলো বাড়ন্ত স্তনকে সাপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে গর্ভাবস্থায় সঠিক সাইজের ব্রা ব্যবহার না করলে অস্বস্তি হতে পারে তাই এসময়ে আপনার স্তনের আকার অনুযায়ী সঠিক সাইজের পোশাক ও ব্রা বেছে নিন গর্ভাবস্থায় হরমোনের তারতম্যের কারণে স্তন ও স্তনের বোঁটাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি হতে পারে৷ তা ছাড়া গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাধারণত স্তনের আকার বাড়তে থাকায় স্তনের ত্বক কিছুটা টানটান হয় এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে এবং স্তন ও স্তনের বোঁটায় চুলকানি হতে পারেত্বক টানটান হওয়ার কারণে স্তনের বোঁটা ও এর আশেপাশের চামড়ায় স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগও দেখা দিতে পারে আবার কারও কারও একজিমার মতো চর্মরোগের কারণে স্তনের বোঁটা ও এর চারিদিকে চুলকানি হতে পারেস্তনের বোঁটা কিংবা তার চারিদিকে চুলকানি সাধারণত দুশ্চিন্তার বিষয় নয় কিছু ঘরোয়া পরামর্শ মেনে আপনি এই চুলকানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন—আপনার স্তনে অথবা স্তনের বোঁটায় চুলকানি হলেও চেষ্টা করবেন সেই জায়গা না চুলকাতে৷ নখের আঁচড় থেকে ত্বকে আঘাত লাগার কারণে সেখানে ইনফেকশন হতে পারে পাশাপাশি ত্বকের আঘাত থেকে জ্বালাপোড়া হয়ে চুলকানি আরও বেড়ে যেতে পারে এসময়ে ঢিলেঢালা পোশাক ও সঠিক মাপের সুতির ব্রা ব্যবহার করলে আরাম পেতে পারেন চুলকানি বেশি হলে কয়েক টুকরো বরফ একটু মোটা সুতি কাপড়ে জড়িয়ে স্তনে ও বোঁটায় লাগাতে পারেন উষ্ণ বা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলেও চুলকানি ভাব কমে আসতে পারে তবে বেশি গরম পানি দিয়ে গোসল করা থেকে বিরত থাকবেন কেননা সেটি ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে ত্বককে শুষ্ক করে ফেলতে পারে স্তনের চামড়া শুষ্ক হয়ে যাওয়া প্রতিরোধে ভালো কোনো লোশন ময়েশ্চারাইজার গ্লিসারিন অথবা অলিভ অয়েল লাগাতে পারেনউল্লেখ্য যদি কোনো কারণে চুলকানির ধরন আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয় কিংবা চুলকানির কারণে স্বাভাবিক কাজকর্ম ও ঘুম ব্যাহত হয় তাহলে একজন ডাক্তার দেখিয়ে নিবেন তিনি আপনার সমস্যা অনুযায়ী ক্রিম মলম অথবা গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন মুখে খাওয়ার ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে স্তনের বোঁটা থেকে দুধের মতো হলুদাভসাদা বা সোনালী রঙের আঠালো তরল নিঃসৃত হতে পারে এই তরল হলো কোলোস্ট্রাম বা শালদুধ শিশু জন্মের পর প্রথম দুধ হিসেবে এই শালদুধ পান করে এটি শিশুকে তার প্রয়োজনীয় নানান গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে শালদুধে অনেক অ্যান্টিবডি থাকে যা নবজাতক শিশুকে নানান রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে[৮]গর্ভাবস্থায় শালদুধ নিঃসৃত হওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই এটি শিশুর জন্মের জন্য আপনার শরীরের প্রস্তুতির একটি সংকেত মাত্র তবে শালদুধ নিঃসরণে যদি আপনার অস্বস্তি হয় কিংবা গায়ের কাপড় ভিজে যায় তাহলে টিস্যু পেপার অথবা ব্রেস্ট প্যাড (এই নামেই দোকানে কিনতে পাওয়া যায়) ব্যবহার করতে পারেনএসময়ে স্তন শুষ্ক ও পরিচ্ছন্ন রাখা গুরুত্বপূর্ণ কারণ স্তন যদি সবসময় ভেজা থাকে তবে সেখানে ছত্রাক জনিত ক্ষত বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা দিতে পারে৷শালদুধ কোনো কারণে রক্তমিশ্রিত থাকলে সেটির রঙ গোলাপি বা লালচে দেখাতে পারে এমন কিছু লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এটি গুরুতর কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে গর্ভাবস্থায় আপনার স্তনসহ সারা দেহে রক্ত সরবরাহ বাড়েএসময়ে শরীরে নানান হরমোনের মাত্রাও বাড়ে এসবের প্রভাবে স্তনের শিরাগুলো আকারে বড় হয় ও দৃশ্যমান হয়ে ওঠেএগুলো তখন স্তনের গায়ে বেগুনী বা নীলচে রেখার মতো দেখা দেয় শিশুর জন্মের পর এই রেখাগুলো নিজে থেকেই মিলিয়ে যায় তাই এর জন্য সাধারণত কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে নাপড়ুন গর্ভাবস্থায় স্তনের দৃশ্যমান শিরা গর্ভাবস্থায় কারও কারও স্তনে চাকা বা পিণ্ডের মত দেখা দিতে পারে এ নিয়ে ঘাবড়ানোর তেমন কিছু নেই গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে সাধারণত স্তনে দুধ উৎপাদন শুরু হয় অনেকসময় দুধ জমে গিয়ে স্তনের গায়ে এমন ফুলে ওঠা অংশ বা পিণ্ড দেখা দেয় তবে এমন কোনো পিণ্ড যদি আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে গিয়ে স্তন পরীক্ষা করিয়ে নিবেনকখন ডাক্তারের কাছে যাবেন স্তনে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে যেমন— স্তনে অথবা বগলে শক্ত চাকা বা দলার ন্যায় অনুভব করা স্তনের কোনো অংশ ফুলে যাওয়া স্তনে অস্বাভাবিক ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হওয়া স্তনের বোঁটা থেকে রক্ত পুঁজ কিংবা কোনো অস্বাভাবিক তরল নিঃসৃত হওয়া স্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া স্তনের চামড়ায় চুলকানি হওয়া অথবা তা লালচে হয়ে যাওয়া স্তনের চামড়ায় টোল বা গর্তের মতো হওয়া স্তনের আকারআকৃতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করা এসব লক্ষণের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হয়তো স্বাভাবিক তবে এগুলো স্তনের বিশেষ কোনো রোগ এমনকি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে[১২] তাই সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা শুরু করতে ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়াই শ্রেয়[১৩] শিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত তার যাবতীয় প্রয়োজনীয় পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকেই পেয়ে থাকে আর এজন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার শরীরে চলতে থাকে প্রস্তুতি এই প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো স্তনের পরিবর্তন যেমন স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠাশিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত তার যাবতীয় প্রয়োজনীয় পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকেই পেয়ে থাকে আর এজন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার শরীরে চলতে থাকে প্রস্তুতি এই প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো স্তনের পরিবর্তন যেমন স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠাগর্ভাবস্থায় স্তনের বোঁটার চারপাশের শিরা বা রক্তনালীগুলো অনেকসময় খুব স্পষ্ট হয়ে ওঠে স্তনের গায়ে এগুলো বেগুনী বা নীলচে রেখার মত দেখায় এটি গর্ভাবস্থার একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন এতে আতংকিত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেইস্তনের দৃশ্যমান শিরা সাধারণত গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের মধ্যেই স্তনের শিরা দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেতবে সবার ক্ষেত্রেই যে এমন পরিবর্তন দেখা দিবে তা নয় তা ছাড়া একেকজনের ক্ষেত্রে স্তনের এই পরিবর্তন একেকরকম হতে পারে ত্বক ফর্সা হলে শিরাগুলো বেশি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠতে পারে আবার ত্বকের বর্ণ গাঢ় হলে আপনি হয়তো শিরাগুলো খেয়ালও করবেন না তাই এটি নিয়ে ঘাবড়ে যাবেন নাসাধারণত গর্ভাবস্থা থেকে শুরু হয়ে সন্তান জন্মদানের পরে কিছু সময় পর্যন্ত স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান থাকতে পারে আবার অনেকের ক্ষেত্রে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর পুরো সময়টা জুড়েও এটি থাকতে পারে তবে এর পরে দৃশ্যমান শিরাগুলো সাধারণত নিজে থেকেই চলে যায়গর্ভাবস্থায় আপনার স্তনে আরও কিছু সাধারণ পরিবর্তন দেখা দিতে পারেযেমন—স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগা স্তনের আকার আগের চেয়ে বড় হওয়া স্তনের বোঁটা ও এর চারপাশের ত্বকের রঙ গাঢ় হয়ে যাওয়া স্তনের বোঁটা থেকে হলুদাভ দুধের মতো তরল বেরিয়ে আসা গর্ভাবস্থার প্রথমদিক থেকেই গর্ভবতী নারীর শরীরে রক্ত সরবরাহের পরিমাণ বাড়তে থাকে সেই সাথে শিরাগুলোও প্রসারিত হয় এই প্রসারণে গর্ভকালীন হরমোনের ভূমিকা রয়েছে[৪]এই বাড়তি রক্তের চাপ আর হরমোনের তারতম্যের কারণে রক্তনালীর ওপরে চাপ সৃষ্টি হয় ফলে শিরাগুলো কিছুটা ফুলে উঠতে শুরু করে[৫] এভাবেই ফুলে ওঠা শিরাগুলোকে স্তনের গায়ে বেগুনী বা নীলচে রেখা হিসেবে দেখা যায় তবে কখনো কখনো স্তনের শিরাগুলো এভাবে দৃশ্যমান হয়ে ওঠার পেছনে আরও কিছু কারণ কাজ করতে পারে যেমন—পারিবারিক ইতিহাস পরিবারের অন্যদের (যেমন মা বোন খালা অথবা নানী) গর্ভবতী অবস্থায় এমনটা হয়ে থাকলে আপনার গর্ভকালীন সময়েও এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে স্তনের আকার স্তনের আকার বড় হলে গর্ভাবস্থায় দৃশ্যমান শিরা দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে এ ছাড়া স্তন বড় করার অপারেশন করিয়েছেন এমন ৯৭ জন নারীর ওপরে করা গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে স্তন বড় করার পরে বেশিরভাগ নারীর স্তনের শিরাগুলো অধিক দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে[৬] মন্ডরস ডিজিজ এটি একটি বিরল রোগ[৭] এই রোগে বুক বা স্তনের চামড়ার নিচে থাকা শিরাগুলোতে প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া হয় ফলে স্তনের গায়ের শিরাগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্তনের দৃশ্যমান শিরাগুলো শিশুর জন্মের পরে নিজে নিজেই মিলিয়ে যায় তাই আলাদা করে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় সঠিক মাপ অনুযায়ী আরামদায়ক ও ভালো সাপোর্টযুক্ত ব্রা ব্যবহার করলে এই সমস্যা উপশম হতে পারেকখন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন যদি শিশুর জন্মের অনেকদিন পরেও স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান থেকে যায় অথবা এই সমস্যার কারণে অনেক অস্বস্তি হতে থাকে তাহলে একজন ডার্মাটোলোজিস্ট বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে নিতে পারেন তিনি আপনার স্তন পরীক্ষা করে দেখার পাশাপাশি কিছু পরীক্ষানিরিক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন এ ছাড়া স্তনে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে যেমন— স্তনে অথবা বগলে চাকা বা দলার ন্যায় অনুভব করা স্তনের কোনো অংশ ফুলে যাওয়া স্তনে অস্বাভাবিক ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হওয়া স্তনের বোঁটা থেকে রক্ত পুঁজ কিংবা কোনো অস্বাভাবিক তরল নিঃসৃত হওয়া স্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া স্তনের চামড়ায় চুলকানি হওয়া অথবা তা লালচে হয়ে যাওয়া স্তনের চামড়ায় টোল বা গর্তের মতো হওয়া স্তনের আকারআকৃতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করা এসব লক্ষণের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হয়তো স্বাভাবিক তবে এগুলো স্তনের বিশেষ কোনো রোগ এমনকি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারেতাই ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়াই শ্রেয় স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠা গর্ভাবস্থার একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন এটি প্রতিরোধ করার তেমন কোনো উপায় নেই তা ছাড়া গর্ভাবস্থায় শিরা ফুলে ওঠা আসলে কোনো রোগ বা সমস্যা নয় বরং এটি অনাগত শিশুর পুষ্টি সরবরাহের জন্য আপনার শরীরের প্রস্তুতি মাত্রতাই এই সমস্যা নিয়ে বিচলিত না হয়ে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করাই শ্রেয় কারণ নির্দিষ্ট সময়টুকুর পরে এটি সাধারণত নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়৷ রক্তে শর্করা বা ব্লাড সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়াকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া (Hyperglycemia) বলে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি একটি পরিচিত সমস্যা টাইপ ১ ডায়াবেটিস টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস—যেকোনো ধরণের ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রেই হাইপারগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে রক্তে শর্করা বা ব্লাড সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়াকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া (Hyperglycemia) বলে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে এটি একটি পরিচিত সমস্যা টাইপ ১ ডায়াবেটিস টাইপ ২ ডায়াবেটিস ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিস—যেকোনো ধরণের ডায়াবেটিস রোগে আক্রান্ত রোগীর ক্ষেত্রেই হাইপারগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে হাইপারগ্লাইসেমিয়া এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়া শব্দ দুটি দেখতে একই রকম মনে হলেও এই দুটি শব্দ পরস্পরের বিপরীত অর্থ বহন করে রক্তে সুগারের মাত্রা যদি ন্যূনতম স্বাভাবিক মাত্রার চেয়েও কমে যায় তখন সেই অবস্থাটিকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া (Hypoglycemia) বলা হয় অপরদিকে রক্তে শর্করা বা সুগার সর্বোচ্চ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে বেড়ে যাওয়াকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া (Hyperglycemia) বলেকখনো কখনো ডায়াবেটিস নেই এমন কারোর ক্ষেত্রেও বিশেষ অসুস্থতার ইতিহাস থাকলে হাইপারগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে এমন কিছু বিশেষ অসুস্থতা হচ্ছে—ব্রেইন স্ট্রোক হার্ট অ্যাটাক কিংবা গুরুতর কোনো সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়াএই আর্টিকেলে ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে হাইপারগ্লাইসেমিয়ার প্রভাব ও চিকিৎসা নিয়ে আলোচনা করা হয়েছে ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে হাইপারগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলো সাধারণত কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ ধরে ধীরে ধীরে দেখা দেয় কারো কারো ক্ষেত্রে রক্তের শর্করা বেড়ে অতি উচ্চমাত্রায় পৌঁছানোর আগে কোনো লক্ষণ নাও দেখা দিতে পারেহাইপারগ্লাইসেমিয়ার অন্যতম কিছু লক্ষণ হলো—অতিরিক্ত তৃষ্ণা পাওয়া কিছুক্ষণ পরপর মুখ শুকিয়ে আসা ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া শারীরিক ও মানসিক ক্লান্তি ঝাপসা দৃষ্টি চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমে যাওয়া বারবার ইনফেকশন হওয়া যেমন—ছত্রাকের সংক্রমণ (Thrush) মূত্রথলির সংক্রমণ (Cystitis) অথবা ত্বকের ইনফেকশন পেট ব্যথা বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া নিঃশ্বাসে মিষ্টি ফলের ন্যায় গন্ধ হওয়া হাইপারগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণগুলো যেহেতু ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হওয়া নির্দেশ করতে পারে তাই ডায়াবেটিস নেই জানলেও এসব লক্ষণগুলো দেখা দিলে এই ব্যাপারে নিশ্চিত হতে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে প্রয়োজনে পরীক্ষাও করিয়ে নিতে পারেন নানান কারণে ডায়াবেটিস রোগীদের ব্লাড সুগারের লেভেল বেড়ে যেতে পারে যেমন—মানসিক চাপ যেকোনো অসুস্থতা (যেমন ঠান্ডার সমস্যা) অতিরিক্ত খাবার খাওয়া (যেমন তিন বেলার খাবারের পাশাপাশি বিভিন্ন স্ন্যাকস খাওয়া) ব্যায়াম না করা ডায়াবেটিসের ঔষধের কোন ডোজ বাদ পড়া অথবা ভুল ডোজে ঔষধ সেবন করা নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ সেবন করা (যেমন স্টেরয়েড) রক্তে সুগারের মাত্রা অতিরিক্ত কমে গিয়ে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে প্রয়োজনের অতিরিক্ত চিকিৎসা চালিয়ে যাওয়াউল্লেখ্য বাড়ন্ত শিশুকিশোরদের বেড়ে ওঠার সময়ে কখনো কখনো হাইপারগ্লাইসেমিয়া দেখা দিতে পারে প্রথমবার ডায়াবেটিস ধরা পড়ার পরে ডাক্তারের কাছ থেকে নিচের দুটি বিষয় জেনে নিন—আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা কেমন সুগার কোন মাত্রায় নামিয়ে আনা প্রয়োজন ঘরে বসেই রক্তে সুগারের মাত্রা মাপার মেশিন বা গ্লুকোমিটারের সাহায্যে নিয়মিত ডায়াবেটিস পরীক্ষা করে রক্তে সুগারের মাত্রা পর্যবেক্ষণ করা যায় অথবা ২৩ মাস পরপর হাসপাতালে গিয়ে এইচবিএওয়ানসি (HbA1c) নামক ডায়াবেটিসের পরীক্ষা করিয়ে নিতে পারেন এই পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তে সুগারের গড় মাত্রা এবং সুগার নিয়ন্ত্রিত হচ্ছে কি না সেই সম্বন্ধে ধারণা পাওয়া যায় সাধারণত HbA1c এর মান ৬৫ এর নিচে থাকা ভালো সবার ক্ষেত্রে রক্তে সুগারের লক্ষ্যমাত্রা একই হয় না তবে সাধারণত নিচের লক্ষ্যমাত্রাগুলোকে ব্লাড সুগারের স্বাভাবিক মাত্রা হিসেবে ধরা হয়—গ্লুকোমিটার খালিপেটে ৪ থেকে ৭ মিলিমোল/লিটার এবং খাওয়ার ২ ঘন্টা পরে ৮৫ থেকে ৯ মিলিমোল/লিটার এইচবিএওয়ানসি (HbA1c) টেস্ট ৬৫ শতাংশ বা ৪৮ মিলিমোল/মোলের নিচে ডায়াবেটিস চিকিৎসার প্রধান লক্ষ্য হলো ব্লাড সুগারের মাত্রা যতটুকু সম্ভব স্বাভাবিক মাত্রার কাছাকাছি রাখা তবে সাবধানতা অবলম্বন করার পরেও ডায়াবেটিস রোগীদের কোনো না কোনো পর্যায়ে হাইপারগ্লাইসেমিয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে হাইপারগ্লাইসেমিয়া নির্ণয় করে এর চিকিৎসা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ চিকিৎসা না নিলে হাইপারগ্লাইসেমিয়া থেকে বিভিন্ন জটিল স্বাস্থ্য সমস্যা তৈরি হতে পারে হঠাৎ হঠাৎ ডায়াবেটিস রোগীর সুগারের লেভেল কিছুটা বেড়ে যেতে পারে এটি সাধারণত তেমন উদ্বেগের বিষয় নয় কারণ মৃদু হাইপারগ্লাইসেমিয়া সহজ চিকিৎসায় সেরে ওঠে এমন কি কখনো কখনো সুগার বিশেষ চেষ্টা ছাড়াই স্বাভাবিক লেভেলে নেমে আসে তবে যদি রক্তে সুগারের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় অথবা দীর্ঘ সময় ধরে উচ্চমাত্রায় থাকে তাহলে এর পরিণতি মারাত্মক হতে পারেরক্তের সুগার অতি উচ্চমাত্রায় পৌঁছে গেলে তা প্রাণঘাতী জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে যেমন—ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস—ফ্যাট বা চর্বি ভেঙ্গে শরীরে শক্তি উৎপাদনের প্রয়োজন হলে এই অবস্থার সৃষ্টি হয় চর্বি ভাঙনের ফলে দেহে কিটোন বডি নামক রাসায়নিক পদার্থ তৈরি হয় অতিরিক্ত কিটোন বডি জমে গেলে ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস দেখা দিতে পারে—যা থেকে রোগী ডায়াবেটিক কোমায় পর্যন্ত চলে যেতে পারে সাধারণত টাইপ ১ ডায়াবেটিসের রোগীদের এই সমস্যা হয়ে থাকে হাইপারঅসমোলার হাইপারগ্লাইসেমিক স্টেট—রক্তের সুগার অতি উচ্চমাত্রায় পৌঁছে গেলে শরীর এই অতিরিক্ত সুগার বের করে দেয়ার চেষ্টা করে এই প্রক্রিয়ায় মারাত্মক পানিশূন্যতা দেখা দেয় সাধারণত টাইপ ২ ডায়াবেটিসের রোগীদের ক্ষেত্রে এই অবস্থা সৃষ্টি হয়যদি মাসের পর মাস ব্লাড সুগারের লেভেল সবসময়ই বেশি থাকে তাহলে শরীরের বিভিন্ন অংশের চিরস্থায়ী ক্ষতি হতে পারে যেমন চোখ নার্ভ বা স্নায়ু কিডনি ও রক্তনালীসমূহ—সারা জীবনের জন্য নষ্ট হয়ে যেতে পারেতাই আপনার যদি নিয়মিত হাইপারগ্লাইসেমিয়া হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হোন রক্তে সুগারের পরিমাণ স্বাস্থ্যকর মাত্রার কাছাকাছি রাখার জন্য চিকিৎসা ও জীবনধারায় কিছু পরিবর্তন আনার প্রয়োজন হতে পারে ডায়াবেটিক রোগীর ক্ষেত্রে যদি হাইপারগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দেয় তাহলে রক্তের সুগারে নিয়ন্ত্রণে ডাক্তারের দেওয়া পরামর্শগুলো মেনে চলতে হবে আপনার করণীয় সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা না থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে আপনার করণীয় সম্পর্কে নিশ্চিত হয়ে নিনসুগার কমানোর ঘরোয়া উপায়১ খাবারের তালিকা পরিবর্তন যেসব খাবার খেলে রক্তে সুগার বেড়ে যায় সেগুলো এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেয়া হতে পারে এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে কেক মিষ্টি ও বিভিন্ন চিনিযুক্ত পানীয়২ প্রচুর পরিমাণে পানি ও চিনিমুক্ত পানীয় পান করা এভাবে অতি উচ্চমাত্রার হাইপারগ্লাইসেমিয়ার কারণে সৃষ্ট পানিশূন্যতার সমাধান হবে ৩ নিয়মিত শরীরচর্চা করা নিয়মিত হাঁটাহাঁটির মতো হালকা ব্যায়াম করলেও তা ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারে অতিরিক্ত ওজনের অধিকারীদের ক্ষেত্রে বিভিন্ন শরীরচর্চা পদ্ধতি ওজন কমিয়ে আনতে সাহায্য করে ওজন নিয়ন্ত্রণে থাকলে হাইপারগ্লাইসেমিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায়৪ ইনসুলিনের ডোজ পরিবর্তন ইনসুলিন ব্যবহারকারীদের ক্ষেত্রে ব্লাড সুগার নিয়ন্ত্রণে আনার জন্য ইনসুলিনের ডোজ পরিবর্তনের প্রয়োজন হতে পারে এ বিষয়ে ডাক্তারের কাছ থেকে সুনির্দিষ্ট পরামর্শ নেওয়া উচিত৫ নিয়মিত পর্যবেক্ষণ ডায়াবেটিস রোগীকে নিয়মিত রক্তের সুগার পরিমাপ করার পরামর্শ দেওয়া হয়ে থাকে এ ছাড়া ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস নির্ণয়ের উদ্দেশ্যে রক্ত অথবা মূত্র পরীক্ষায় কিটোন টেস্ট করা হতে পারে ব্লাড সুগার পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে না আসা পর্যন্ত কোনো নতুন লক্ষণ দেখা দিচ্ছে কি না সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে এমন লক্ষণ কোনো গুরুতর সমস্যা নির্দেশ করতে পারে৷ কখন জরুরি চিকিৎসা সেবা নিতে হবেরক্তে সুগারের মাত্রা বেশি থাকার পাশাপাশি নিম্নোক্ত লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে—বমি বমি ভাব বা বমি হলে পেটব্যথা ও ডায়রিয়া হলে শ্বাসপ্রশ্বাস গভীর ও দ্রুত হয়ে গেলে ২৪ ঘন্টার বেশি সময় ধরে জ্বর থাকলে (অর্থাৎ তাপমাত্রা ৩৮° সেলসিয়াস বা ১০০৪° ফারেনহাইটের উপরে থাকলে) পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিলে (যেমন মাথাব্যথা ত্বক শুষ্ক হয়ে যাওয়া হৃৎস্পন্দন দ্রুত ও দুর্বল হয়ে যাওয়া) ঝিমিয়ে পড়া অথবা সজাগ থাকতে কষ্ট হলেএসব লক্ষণ হাইপারগ্লাইসেমিয়ার কারণে সৃষ্ট গুরুতর জটিলতা (যেমন ডায়াবেটিক কিটোএসিডোসিস ও হাইপারঅসমোলার হাইপারগ্লাইসেমিক স্টেট) এর চিহ্ন হতে পারে এ সকল ক্ষেত্রে জরুরি হাসপাতালে গিয়ে চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন সহজ কিছু উপায় অবলম্বন করে গুরুতর বা দীর্ঘমেয়াদী হাইপারগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি কমানো সম্ভব যেমন—খাবার ও পানীয় বিষয়ে সতর্ক হোন অতিরিক্ত চিনিযুক্ত বা মিষ্টিজাতীয় খাবার কিভাবে রক্তের সুগারের মাত্রাকে প্রভাবিত করতে পারে সেই ব্যাপারে বিশেষভাবে সচেতন হোন চিকিৎসা পদ্ধতি সঠিকভাবে মেনে চলুন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত ঔষধ সেবন করুন এবং ইনসুলিন নেওয়া চালিয়ে যান শুয়েবসে না থেকে যতটুকু সম্ভব সক্রিয় থাকার চেষ্টা করুন নিয়মিত শরীরচর্চা রক্তে সুগারের মাত্রা নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে তবে যারা ডায়াবেটিসের ঔষধ সেবন করেন তাদের ক্ষেত্রে ব্যায়াম শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে কারণ কিছু ঔষধ খাওয়া অবস্থায় ভারী ব্যায়াম অথবা অধিক শরীরচর্চা করলে ঔষধগুলোর প্রভাবে সুগারের পরিমাণ অতিরিক্ত মাত্রা কমে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে পারে অসুস্থ অবস্থায় বাড়তি যত্ন নিন অসুস্থ অবস্থায় রক্তের সুগার নিয়ন্ত্রণে ডাক্তার কিছু বিশেষ পরামর্শ মেনে চলার উপদেশ দিতে পারেন রক্তে গ্লুকোজ বা সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কমে গেলে তাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হয় অনেকে একে সংক্ষেপে হাইপো হিসেবে চেনেন মূলত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের বিশেষ করে ইনসুলিন নিতে হয় এমন রোগীদের হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দেয়রক্তে গ্লুকোজ বা সুগারের পরিমাণ স্বাভাবিক মাত্রার চেয়ে কমে গেলে তাকে হাইপোগ্লাইসেমিয়া বলা হয় অনেকে একে সংক্ষেপে হাইপো হিসেবে চেনেন মূলত ডায়াবেটিসে আক্রান্ত রোগীদের বিশেষ করে ইনসুলিন নিতে হয় এমন রোগীদের হাইপোগ্লাইসেমিয়া দেখা দেয়অপরদিকে রক্তে সুগারের মাত্রা বেড়ে যাওয়াকে হাইপারগ্লাইসেমিয়া বলেহাইপোগ্লাইসেমিয়া হলে মাথা ঘুরানো ও বুক ধড়ফড় করা থেকে শুরু করে খিঁচুনি ও জ্ঞান হারানোর মতো মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই হাইপো এর লক্ষণগুলো দ্রুত শনাক্ত করে চিকিৎসা শুরু করা জরুরি সাধারণত বাড়িতে বসে নিজে নিজেই এর চিকিৎসা করা সম্ভব হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ একেকজনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে আপনার যদি বারবার সুগার কমে যাওয়ার ইতিহাস থাকে তাহলে আপনি নিজেই হয়তো লক্ষণগুলো খেয়াল করলে হাইপোগ্লাইসেমিয়া হচ্ছে কি না তা বুঝতে পারবেন তবে সময়ের সাথে আপনার লক্ষণগুলোতেও ভিন্নতা আসতে পারেরক্তে সুগার কমে যাওয়ার লক্ষণগুলোর মধ্যে কিছু লক্ষণ শুরুর দিকেই দেখা দেয় দ্রুত চিকিৎসা শুরু না করলে খিঁচুনি ও জ্ঞান হারানোর মতো মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারেশুরুর দিকের লক্ষণগুলো হলো—অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া ক্লান্ত অনুভব করা মাথা ঘুরানো ক্ষুধা লাগা ঠোঁটের চারিদিকে পিন বা সুঁই ফোটানোর মত অনুভূতি হওয়া শরীরে কাঁপুনি হওয়া বুক ধড়ফড় করা সহজেই বিরক্ত অশ্রুসিক্ত উত্তেজিত অথবা খামখেয়ালি হয়ে যাওয়া ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়াসময়মতো চিকিৎসা শুরু না করলে আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন—দুর্বলতা দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে যাওয়া কাজে মনোযোগ দিতে কষ্ট হওয়া বিভ্রান্তি অসংলগ্ন আচরণ কথা জড়িয়ে যাওয়া ও ভারসাম্যহীন হয়ে পড়া (মাতাল হলে যেমনটা হয়) ঘুম ঘুম লাগা খিঁচুনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলা বা ফিট হয়ে যাওয়াঘুমের মধ্যেও রোগী হাইপো হয়ে যেতে পারে এর ফলে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়— রাতে ঘুম ভেঙে যাওয়া মাথাব্যথা ক্লান্ত লাগা সারারাত অতিরিক্ত ঘেমে বিছানার চাদর ভিজে যাওয়াএসব লক্ষণ ছাড়াও বাড়িতে ডায়াবেটিস মাপা হলে যদি রক্তের সুগার ৪ পয়েন্টের (mmol/l) কম আসে তাহলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করতে হবে ডায়াবেটিসের রোগীদের রক্তে সুগারের মাত্রা কমে হাইপো হয়ে যাওয়ার মূল কারণগুলো হলো—ঔষধের প্রভাব—বিশেষত ডায়াবেটিসের ঔষধের মধ্যে অতিরিক্ত পরিমাণে ইনসুলিন গ্রহণ সালফোনাইলইউরিয়া (যেমন গ্লিবেনক্ল্যামাইড ও গ্লিক্ল্যাজাইড) ও গ্লিনাইড (যেমন রিপাগ্লিনাইড ও ন্যাটেগ্লিনাইড) গ্রুপের ঔষধ সেবন অথবা হেপাটাইটিস সি এর ঔষধ সেবন কোনো বেলার খাবার বাদ দেওয়া অথবা দেরি করে খাওয়া আহারের সময়ে যথেষ্ট পরিমাণে শর্করাযুক্ত খাবার না খাওয়া যেমন ভাত রুটি আলু পাউরুটি পাস্তা ও ফলমূল ব্যায়াম করা—বিশেষ করে ভারী ব্যায়াম ভারী কাজ অথবা পূর্বপরিকল্পনা ছাড়া ব্যায়াম করা অতিরিক্ত মদপান অথবা খালি পেটে মদ পান করামাঝে মাঝে রক্তের সুগার কমে যাওয়ার কোনো স্পষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না কোনো কোনো সময় ডায়াবেটিস নেই এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রেও রক্তের সুগার কমে যেতে পারে যাদের ডায়াবেটিস নেই তাদের সচরাচর হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয় না তবে ডায়াবেটিস ছাড়াও রক্তের সুগারের মাত্রা কমে যাওয়ার অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—খাবার খাওয়ার পরে শরীরে অতিরিক্ত ইনসুলিন নিঃসরণ হওয়া পাকস্থলীর অপারেশনসহ বিভিন্ন কারণে এই অবস্থার সৃষ্টি হয় এক্ষেত্রে সাধারণত শর্করাবহুল খাবার খাওয়ার ৪ ঘন্টা পরে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার উপসর্গ দেখা দেয় না খেয়ে থাকা অথবা রোযা রাখা অপুষ্টি গর্ভকালীন জটিলতা গ্যাস্ট্রিক বাইপাস সার্জারি (ওজন কমানোর উদ্দেশ্যে পাকস্থলীর এক প্রকার অপারেশন) অনিয়ন্ত্রিত মদ পান বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা যেমন— হরমোন জনিত সমস্যা অগ্ন্যাশয়ের রোগ লিভারের সমস্যা কিডনি রোগ অ্যাড্রেনাল গ্রন্থির রোগ অথবা হৃদরোগের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্য সমস্যা কিছু ঔষধ যেমন ম্যালেরিয়ার চিকিৎসায় ব্যবহৃত কুইনাইনবারবার হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে ডাক্তার রক্তে সুগারের মাত্রা প্রকৃতপক্ষেই কমে গিয়েছে কি না সেটি নির্ণয়ে কিছু সাধারণ পরীক্ষানিরীক্ষা করার পরামর্শ দিবেন এ ছাড়া কী কারণে এসব লক্ষণ দেখা দিচ্ছে সেটিও খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন রক্তের সুগার ৪ পয়েন্টের নিচে নেমে গেলে অথবা হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে নিচের কাজগুলো করুন—প্রথম ধাপ চিনিযুক্ত খাবার খান অথবা চিনিযুক্ত পানীয় পান করুনএকটি ছোটো গ্লাসে কোমল পানীয় (যেমন কোক বা সেভেন আপ) অথবা ফলের রস নিয়ে খান বিকল্প হিসেবে ছোটো এক মুঠো মিষ্টি অথবা তিন থেকে ছয়টি গ্লুকোজ বা ডেক্সট্রোজ ট্যাবলেট খেতে পারেনবাড়িতে গ্লুকোজ জেলের টিউব থাকলে দুই টিউব জেল মুখের ভেতরে দিয়ে খেয়ে ফেলুনদ্বিতীয় ধাপ ১০ মিনিট পরে আপনার রক্তের সুগার পরিমাপ করুনযদি এটি ৪ পয়েন্ট বা তার ওপরে থাকে এবং আপনি আগের তুলনায় ভালো অনুভব করেন তাহলে তৃতীয় ধাপে যানযদি রক্তের সুগার এখনো ৪ পয়েন্টের নিচে থাকে তাহলে আবার প্রথম ধাপে গিয়ে চিনিযুক্ত পানীয় অথবা খাবার খান এর ১০১৫ মিনিট পরে আবার রক্তের সুগার পরীক্ষা করুনতৃতীয় ধাপ ইতোমধ্যে যদি আপনার খাবারের সময় হয়ে থাকে তাহলে খাবার খেয়ে নিন এক্ষেত্রে এমন খাবার বেছে নেওয়া উচিত যা ধীরে ধীরে শরীরে শর্করা সরবরাহ করে খাবারটি হতে পারে আটার রুটি (লাল আটার রুটি হলে ভালো হয়) ডাল ও সবজি দিয়ে রান্না করা খিচুড়ি লাল চালের ভাত অথবা ওটস এগুলোর সাথে গরুর দুধ অথবা দই খেতে পারেন এক্ষেত্রে লোফ্যাট দুধ ও দই বেছে নেওয়া উত্তমআহারের সময় না হয়ে থাকলে শর্করাযুক্ত কোনো নাস্তা খান নাস্তাটি হতে পারে এক পিস পাউরুটি (হোলগ্রেইন হলে ভালো হয়) কয়েকটি বিস্কুট অথবা এক গ্লাস গরুর দুধআপনি যদি আগের চেয়ে সুস্থ অনুভব করেন অথবা হাতেগোনা কয়েকবার হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দিয়ে থাকে তাহলে সাধারণত হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজন হবে না কিন্তু যদি বারবার হাইপোগ্লাইসেমিয়া হতে থাকে অথবা রক্তে সুগার কমে যাওয়ার পরও আপনার কোনো লক্ষণ দেখা না দেয় তাহলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে হবে প্রথমে রোগীকে নিচের বর্ণনা অনুযায়ী রিকভারি পজিশন নামক একটি বিশেষ অবস্থানে রাখুন এরপর যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুননিস্তেজ অবস্থায় রোগীর গলায় যেন কিছু আটকে না যায় সেজন্য মুখে কোনো ধরনের খাবার দেওয়া থেকে বিরত থাকুনরোগীকে রিকভারি পজিশনে রাখার উপায়নির্দেশনা অনুযায়ী রোগীকে এই অবস্থানে আনা কিছুটা চ্যালেঞ্জিং কিন্তু এটি সঠিকভাবে সম্পন্ন করার মাধ্যমে রোগীর শ্বাসরুদ্ধ হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনা যায় নিচে রোগীকে রিকভারি পজিশনে রাখার উপায় নয়টি ধাপে তুলে ধরা হয়েছে—১ রোগীকে তার পিঠের ওপর শুইয়ে দিন২ রোগীর একপাশে হাঁটু গেড়ে বসুন রোগীর যেই হাতটি আপনার কাছে আছে সেটি রোগীর দেহের সাথে সমকোণে বাঁকিয়ে রাখুন অর্থাৎ রোগীর হাতটি কাঁধ বরাবর আড়াআড়িভাবে রাখুন এভাবে রাখবেন যেন হাতের তালু ওপরের দিকে মুখ করে থাকে৩রোগীর অপর হাতটি বিশেষ কায়দায় ভাঁজ করতে হবে এজন্য আপনি রোগীর যেদিকে বসেছেন সেই গালের ওপরে রোগীর অপর হাতটি বসান রোগীর হাত এমনভাবে ভাঁজ করুন যেন এই হাতের পেছনের দিকটি রোগীর গালের ওপর থাকে এবার আপনার এক হাত দিয়ে রোগীর হাতটি তার গালের ওপর ধরে রাখ…৪ এবার রোগীর যেই হাঁটু আপনার থেকে দূরে আছে সেটি ভাঁজ করতে হবে আপনার যেই হাত খালি আছে সেটি দিয়ে রোগীর হাঁটু ৯০ ডিগ্রি কোণে বা সমকোণে ভাঁজ করুন৫ রোগীর ভাঁজ করা হাঁটু ধরে রোগীকে সাবধানে টেনে একপাশে কাত করুন এমনভাবে কাত করবেন যেন রোগী আপনার দিকে মুখ করে কাত হয় যেই পা নিচে থাকবে সেটি যেন লম্বা হয়ে থাকে৬ রোগীর ভাঁজ করা অর্থাৎ গালের ওপর রাখা হাত যেন মাথার ভারসাম্য ধরে রাখে সেটি নিশ্চিত করতে হবে রোগীর অপর হাত অর্থাৎ আড়াআড়িভাবে রাখা হাতটি কোনো একপাশে বেশি কাত হয়ে যাওয়া প্রতিরোধ করবে৭ রোগীকে কাত করার পরেও যেন ভাঁজ করা হাঁটু সমকোণে থাকে সেটি নিশ্চিত করুন৮ রোগীর মাথা আলতো করে পেছনের দিকে কাত করুন এবং থুতনি উঁচু করে ধরুন এভাবে শ্বাসনালী উন্মুক্ত করুন শ্বাসপ্রশ্বাসে কোনো কিছু বাধা সৃষ্টি করছে কি না সেটি লক্ষ কর৯ রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা হওয়ার আগ পর্যন্ত রোগীকে এভাবে রেখে অবস্থা প্রতিনিয়ত পর্যবেক্ষণ করতে থাকুনউল্লেখ্য হাতের কাছে যদি গ্লুকাগন (Glucagon) ইনজেকশন থাকে এবং আপনি এটি দেওয়ার প্রক্রিয়া জানেন তাহলে রোগীকে রিকভারি পজিশনে রেখে এই ইনজেকশন দিন তবে রোগী যদি হাইপো হওয়ার আগে মদপান করে থাকে তাহলে এটি দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবেযদি ইনজেকশন দেওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হয় তাহলে রোগীকে জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবেইনজেকশন দেওয়ার ১০ মিনিটের মধ্যে যদি রোগীর জ্ঞান ফিরে আসে এবং রোগী সুস্থ বোধ করে তাহলে রোগীর অবস্থা পর্যবেক্ষণ করুন যদি তিনি ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া করতে পারেন তাহলে তাকে শর্করাযুক্ত একটি স্ন্যাকস খেতে দিন স্ন্যাকস হিসেবে এক পিস পাউরুটি বা টোস্ট (হোলগ্রেইন হলে ভালো হয়) কয়েকটি বিস্কুট অথবা এক গ্লাস গরুর দুধ বেছে নিতে পারেনরোগীর জ্ঞান ফিরে আসলেও নিচের দুটি ক্ষেত্রে রোগীকে হাসপাতালে নিতে হবে—বমি হলে রক্তের সুগার আবারও কমে গেলেআপনি কখনো গুরুতর হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণে জ্ঞান হারিয়ে থাকলে ডাক্তারকে বিষয়টি অবহিত করা জরুরি রক্তে সুগার কমে যাওয়ার কারণে কারও খিঁচুনি হলে নিচের পদক্ষেপগুলো অনুসরণ করুন—১ রোগীর সাথে থাকুন তিনি যেন আঘাত না পান সেদিকে লক্ষ রাখুন রোগীকে নরম কিছুর ওপরে শুইয়ে দিন সবধরনের বিপদজনক জিনিস থেকে রোগীকে দূরে সরিয়ে রাখুন যেমন রাস্তাঘাট চুলা হিটার রেডিয়েটর ও উন্মুক্ত বৈদ্যুতিক সংযোগ২ যদি পাঁচ মিনিটের বেশি সময় ধরে খিঁচুনি থাকে তাহলে রোগীকে জরুরী ভিত্তিতে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন৩ খিঁচুনি বন্ধ হয়ে গেলে রোগীকে চিনিযুক্ত খাবার খেতে দিন এবং হাইপোগ্লাইসেমিয়ার চিকিৎসার সাধারণ পদ্ধতি অনুসরণ করুনমারাত্মক হাইপোগ্লাইসেমিয়ার কারণে আপনার কখনো খিঁচুনি হয়ে থাকলে ডাক্তারকে বিষয়টি অবহিত করা গুরুত্বপূর্ণ ডায়াবেটিসের রোগীরা নিচের ছয়টি উপদেশ মেনে চলার মাধ্যমে রক্তের সুগার কমে হাইপো হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারেন—১ নিয়মিত রক্তের সুগার লেভেল পরিমাপ করতে হবে রক্তের সুগার কমে যাওয়ার লক্ষণগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকতে হবে এভাবে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসা শুরু করে মারাত্মক নানান জটিলতা এড়ানো সম্ভব হবে২ সবসময় কিছু চিনিযুক্ত খাবার অথবা পানীয় সাথে রাখতে হবে যেমন গ্লুকোজ বা ডেক্সট্রোজ ট্যাবলেট ফলের জুস কিছু মিষ্টি অথবা লজেন্স যদি গ্লুকাগন ইনজেকশন কিট থাকে তাহলে সেটি সবসময় সাথে রাখতে হবে৩ কোনো বেলার আহার বাদ দেওয়া যাবে না সঠিক সময়ে প্রতি বেলার খাবার খেয়ে নিতে হবে বিশেষ করে সকালের নাস্তা কোনোভাবেই বাদ দেওয়া যাবে না আপনি বিশেষ কোনো ডায়েট অনুসরণ করলে এ ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৪ ব্যায়াম করার সময়ে সতর্ক থাকতে হবে ব্যায়ামের আগে শর্করাযুক্ত স্ন্যাকস খেয়ে নিলে সেটি হাইপো এর ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে ভারী ব্যায়াম করার আগে অথবা পরে ইনসুলিনসহ ডায়াবেটিসের কিছু ঔষধের ডোজ কমানোর প্রয়োজন হতে পারে এ ব্যাপারে ডাক্তারের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে নিন৫ বিশেষত ইনসুলিন ব্যবহারকারী রোগীর ঘুমের মধ্যে হাইপো হয়ে যেতে পারে এই ঘটনা প্রতিরোধে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিস্কুট অথবা এক পিস পাউরুটির মতো শর্করাযুক্ত স্ন্যাকস খেতে হবে৬ অতিরিক্ত মদপান থেকে বিরত থাকতে হবেযদি বারবার রক্তের সুগারের পরিমাণ কমে যায় তাহলে সেটি প্রতিরোধ করার উপায় জানতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ডায়াবেটিস অথবা অন্য কোনো রোগের কারণে রক্তের সুগার কমে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকলেও আপনি হয়তো গাড়ি চালাতে পারবেন তবে এক্ষেত্রে বিপদ এড়াতে কিছু বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করা খুবই গুরুত্বপূর্ণডায়াবেটিস রোগীদের পেশাগত কারণে কিংবা নিত্যদিনের যাতায়াতে গাড়ি (যেমন সিএনজি মোটরগাড়ি পিকআপ বাস ও ট্রাক) চালাতে হতে পারে এক্ষেত্রে হাইপোগ্লাইসেমিয়ার ঝুঁকি এড়াতে নিচের তিনটি বিষয় নিশ্চিত করা উচিত—গাড়ী চালানোর পূর্বে ২ ঘন্টার ভেতর ব্লাড সুগারের লেভেল পরিমাপ করা দীর্ঘ সময় ধরে গাড়ি চালালে ২ ঘন্টা পর পর ব্লাড সুগারের লেভেল পরিমাপ করা যাত্রা শুরু করার সময়ে চিনিযুক্ত হালকা নাস্তা এবং কলা অথবা আটার রুটির মতো শর্করা জাতীয় খাবার সাথে রাখাচলন্ত অবস্থায় যদি মনে হয় সুগারের মাত্রা কমে হাইপো হয়ে গিয়েছে তাহলে—নিরাপদ স্থানে গাড়ি থামিয়ে ফেলতে হবে চাবি সরিয়ে নিয়ে গাড়ি বন্ধ করে রাখতে হবে চালকের আসন থেকে সরে যেতে হবে গ্লুকোমিটারের সাহায্যে রক্তের সুগারের লেভেল মাপতে হবে যদি হাইপোগ্লাইসেমিয়া হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে স্বাভাবিক বোধ করার অন্তত ৪৫ মিনিট হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত গাড়ি চালানো যাবে না গর্ভাবস্থায় অর্ধেকের বেশি নারীর হাত ঝিনঝিন করছে বা অবশ হয়ে আসছে বলে মনে হয়ে থাকে[১] বিশেষ করে হাত দিয়ে একটানা অনেকক্ষণ একই ধরনের কাজ করলে এমন অনুভূতি হয় যেমন লেখালেখি টাইপ করা অথবা সেলাই করা একে ডাক্তারি ভাষায় কারপাল টানেল সিন্ড্রোম বলা হয়গর্ভাবস্থায় অর্ধেকের বেশি নারীর হাত ঝিনঝিন করছে বা অবশ হয়ে আসছে বলে মনে হয়ে থাকে গর্ভাবস্থায় কার্পাল টানেল সিন্ড্রোমের নানান ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে সাধারণত রাতে ও ভোরবেলা লক্ষণগুলোর তীব্রতা বেড়ে যায় হাতের আঙুল হাত কবজি এমনকি কাঁধ পর্যন্ত এসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে—হাত অসাড় হয়ে আসা সুঁই ফুটানোর মতো খোঁচা খোঁচা অনুভূতি হওয়া ব্যথা হওয়া—এক্ষেত্রে দপদপে ভোঁতা তীক্ষ্ণ বা ধারালো ব্যথা হতে পারে হাত ফুলে যাওয়া আঙুল গরম হয়ে হওয়া হাত দিয়ে কোনো কিছু ধরতে কিংবা ধরে রাখতে কষ্ট হওয়া হাতের বিশেষ করে বৃদ্ধাঙ্গুলির কাজের দক্ষতা কমে যাওয়া এক্ষেত্রে হাত দিয়ে বোতাম লাগানোর মতো সূক্ষ্ম কাজের ক্ষমতা কমে যেতে পারে সাধারণত গর্ভাবস্থায় হাতে ঝিনঝিন করার সমস্যাটা শেষ ত্রৈমাসিকেই বেশি দেখা দেয়[২] তবে শরীরের ওজন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এর আগেও এমনটা হতে পারে৷সাধারণত প্রসবের পর শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে শুরু করলে হাত ঝিনঝিন করার সমস্যাটাও কমতে থাকে[৩] তবে এটি সম্পূর্ণভাবে চলে যেতে প্রসবের প্রায় ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে৷ যদি এরপরও সমস্যাটি থেকে যায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে আমাদের হাতের অনেকগুলো নার্ভ বা স্নায়ুর মধ্যে একটি হলো মিডিয়ান নার্ভ এটি হাতের বিভিন্ন অংশ ও বৃদ্ধাঙ্গুলির নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করে সেই সাথে হাত ও কব্জির অনেকখানি অংশের অনুভূতি বহনের কাজ করেএই মিডিয়ান নার্ভ বগলের কাছ থেকে শুরু হয় এরপরে নিচে নামতে নামতে কব্জিতে থাকা কার্পাল টানেল নামক অংশের ভেতর দিয়ে ঢুকে হাতের আঙুলে গিয়ে শেষ হয়কোনো কারণে কব্জির কাছাকাছি অংশে এই নার্ভের ওপর চাপ পড়লে নার্ভের স্বাভাবিক কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয় একারণেই মূলত কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম বা হাত ঝিনঝিন করার সমস্যা দেখা দেয়ছবি মিডিয়ান নার্ভে চাপ পড়ার ফলে কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম সৃষ্টি হওয়াকার্পাল টানেল সিন্ড্রোম যেকোনো এক কিংবা উভয় হাতে হতে পারে এতে মৃদু থেকে তীব্র—যেকোনো মাত্রায় সমস্যা অনুভব হতে পারে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে মিডিয়ান নার্ভে চাপ পড়ে থাকে যেমন—গর্ভাবস্থায় হাতে পানি এসে হাত ফুলে যাওয়ার কারণে মিডিয়ান নার্ভের ওপর চাপ পড়ে৷[৫] ফলে হাত ঝিনঝিন ও ব্যথা করতে পারে গর্ভাবস্থায় বাড়তি ওজনের কারণে এমন হতে পারে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে অতিরিক্ত ওজনের অধিকারীদের মধ্যে কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম হওয়ার প্রবণতা বেশি[৬] কব্জির ওপর ভার দিয়ে করা হয় এমন কোনো কাজ অনেকক্ষণ ধরে করতে থাকলে মিডিয়ান নার্ভের ওপর চাপ পড়তে পারে বিশেষ করে কেউ যদি অফিসে অথবা বাসায় ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি ধূমপান ও মদপান করলে গর্ভাবস্থায় হাত ঝিনঝিন করার ঘটনা বেড়ে যেতে পারে এগুলো হাতের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করার কারণে এমন হয় বলে ধারণা করা হয়[৭] এই সমস্যা সাধারণত রাতে ঘুমানোর সময়ে বেশি দেখা দেয়৷ কারণ শোয়ার পর শরীরের নিচের অংশের রক্ত পুরো শরীরে ছড়িয়ে যায়৷ ফলে বাড়তি রক্তের কারণে হাতের নার্ভগুলোর ওপর চাপ পড়ে হাত ঝিনঝিন বা অসাড় হয়ে আসার সমস্যা সারিয়ে তুলতে বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করা যায় যেমন—১ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া হাত ঝিনঝিন করলে হাত দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করা থেকে বিরত থাকা উচিত হাত দুটোকে যথাসম্ভব বিশ্রাম দেওয়ার চেষ্টা করুন একটা বালিশের ওপরে হাত রেখে হাতকে বিশ্রাম দিতে পারেন২ ব্যথার জায়গায় বরফ বা ঠান্ডা পানি ব্যবহার একটু মোটা ধরনের একখণ্ড নরম সুতি কাপড়ে কয়েক টুকরো বরফ জড়িয়ে ব্যথার জায়গায় ধরে রাখলে আরাম পাবেন ঠান্ডা পানিতে ১০ মিনিটের মতো হাতের কব্জি ডুবিয়ে রাখলেও ব্যথা কমে আসতে পারে এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে এক মিনিট গরম পানির সেঁক আরেক মিনিট ঠাণ্ডা পানির সেঁক—এভাবে ৫–৬ মিনিট ধরে সেঁক দিতে পারেন৩ বিশ্রামের সময় হাতের পজিশন ঠিক রাখা কাজ করার সময়টুকু ছাড়া বাকি সময়ে হাত দুটোকে উঁচু করে বা ওপরে তুলে রাখতে পারেন এতে হাত ফুলে থাকলে সেই ফোলা কমে আসবে প্রয়োজনে হাতের নিচে বালিশ বা কুশন ব্যবহার করতে পারেন যে হাতে ব্যথা হয় সে হাতের ওপর কাত হয়ে শোয়া থেকে বিরত থাকুন সেই সাথে হাত ঝিনঝিন করার সমস্যা এড়াতে ঘুমানোর সময়ে হাতের ওপর ভার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন ঘুমানোর সময়ে হাত বিছানার বাইরে ঝুলিয়ে দিলে এবং কিছুটা ঝাঁকালে ব্যথা কমে আসতে পারে৪ হাতে ব্রেইস বা বেল্ট পরা আপনার যদি হাতে অনেক বেশি ব্যথা হতে থাকে তাহলে ঘুমানোর সময়ে কবজিতে ব্রেইস বা বেল্ট পরতে পারেন এটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে[৮] এসব Wrist Brace নামে ফার্মেসিতে কিনতে পাওয়া যায়৫ কাজের সময়ে সঠিক দেহভঙ্গি মেনে চলা অনেকক্ষণ ধরে ডেস্কে বসে (যেমন কম্পিউটারে) কাজ করলে চেষ্টা করুন হাতের অবস্থান ঠিক রাখতে টাইপ করার সময়ে খেয়াল করুন হাতের কবজি যেন সোজা থাকে এবং কনুই যেন হাতের চেয়ে কিছুটা উঁচুতে থাকে এমনটা করলে হাতের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে ফলে ব্যথা কমে আসতে পারে[৯]৬ হাতের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা হাতের রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখতে হাত একই রকম ভঙ্গিতে রেখে অনেকক্ষণ ধরে করতে হয়—এমন কাজ যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন সারাদিনে কাজের ফাঁকে অথবা অবসরে দুই হাত স্ট্রেচিং অথবা হালকা ব্যায়াম করে নিতে পারেন৭ লবণ খাওয়া কমানো গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত লবণ খেলে গায়ে পানি আসা বা হাতপা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়৷ তাই এসময়ে যতটা সম্ভব লবণ কম খাওয়ার চেষ্টা করুন৮ বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার অনেকে হাত ব্যথার জন্য আকুপাংচার জাতীয় থেরাপি নিয়ে সুফল পেয়ে থাকেন তবে গর্ভাবস্থায় এ ধরনের কোনো থেরাপি নেওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৯ ঔষধের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ ওপরের ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে হাত ঝিনঝিন না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে পারেন তবে মনে রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় সব ধরনের ব্যথানাশক ঔষধ সেবন নিরাপদ নয় তাই এসময়ে ঔষধ সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া উচিতকার্পাল টানেল এক্সারসাইজ কার্পাল টানেল সিন্ড্রোমের জন্য হাতের কিছু বিশেষ ব্যায়ামের পরামর্শ দেওয়া হয় এগুলো খুবই সহজ বাসায় বসে নিজে নিজেই কর‍তে পারবেন— কবজির ব্যায়াম ছবি কবজির ব্যায়াম আপনার হাত প্রথম ছবির মতো করে টেবিলের ওপরে একটা সুবিধাজনক অবস্থানে রাখুন যেন হাতটা টেবিলের কিনারায় ঝুলে থাকে এরপর দ্বিতীয় ছবির মতো করে হাত টেবিল থেকে না সরিয়ে আঙুলগুলোকে ওপরে ওঠান এবং কবজি ওপরের দিকে ভাঁজ করুন এবার কবজি নিচের দিকে ভাঁজ করুন এবং আঙুলগুলো নিচে নামান এভাবে মোট ১০ বার ওপরনিচ করুন এই ব্যায়ামে অভ্যস্ত হয়ে গেলে পরবর্তীতে আঙুলগুলো ওপরে তোলার সময়ে হাতের ওপরে হালকা কিছু রেখে প্র‍্যাকটিস করুন যেমন ছোটো একটি আপেল মানিব্যাগ ঔষধের বোতল অথবা একটি বালা আঙুলের ব্যায়াম ছবি আঙুলের ব্যায়াম বাহুসহ পুরো হাতকে আরামদায়ক অবস্থানে রাখুন হাতের পাতা দ্বিতীয় ছবির মতো ছড়িয়ে রাখুন এরপর হাতের আঙুলগুলো প্রথম ছবির মতো মুষ্টিবদ্ধ করুন এভাবে ১০ বার মুষ্টি বাঁধুন আর খুলুন পরবর্তীতে হাতের ভেতরে নরম রাবারের বল নিয়ে মুষ্টিবদ্ধ করার অভ্যাস করুন বুড়ো আঙুলের ব্যায়াম ছবি বুড়ো আঙুলের ব্যায়াম হাতকে আরামদায়ক অবস্থানে রাখুন এরপর ছবির মতো বুড়ো আঙুল দিয়ে এক এক করে হাতের প্রতিটি আঙুলে চাপ দিন হৃৎপিণ্ড বা হার্ট আমাদের শরীরে রক্ত সরবরাহের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে কাজটি নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে রক্তনালীর মাধ্যমে হার্টের নিজস্ব রক্ত সরবরাহও নিরবচ্ছিন্নভাবে বজায় থাকতে হয়হৃৎপিণ্ড বা হার্ট আমাদের শরীরে রক্ত সরবরাহের কেন্দ্র হিসেবে কাজ করে কাজটি নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে রক্তনালীর মাধ্যমে হার্টের নিজস্ব রক্ত সরবরাহও নিরবচ্ছিন্নভাবে বজায় থাকতে হয়কোনো কারণে হার্টের এই নিজস্ব রক্তনালীগুলো সংকুচিত হয়ে গেলে অথবা রক্তনালীর ভেতরে ব্লক বা বাধা সৃষ্টি হলে হার্টের রক্ত চলাচলে বিঘ্ন ঘটে এই অবস্থাকে হার্ট অ্যাটাক বলা হয় হার্ট অ্যাটাককে মেডিকেলের ভাষায় মায়োকার্ডিয়াল ইনফার্কশন (এমআই) বলা হয়হার্ট অ্যাটাক একটি ইমারজেন্সি অবস্থা আপনার অথবা আপনার আশেপাশের কারও হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ দেখা দিলে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবেহার্টে রক্ত সরবরাহ বন্ধ থাকলে সেটি হার্টের পেশীগুলোর মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে এর ফলে রোগীর জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে হার্ট অ্যাটাকের কিছু লক্ষণ হলো—১ বুকে ব্যথা বুকের মাঝখানে চাপ ধরার মতো ব্যথা হতে পারে এছাড়া রোগীর বুকের মধ্যে কিছু চেপে বসে আছে অথবা কিছু আটকে (টাইট হয়ে) আসছে এমন অনুভূত হতে পারে২ শরীরের অন্য জায়গায় ব্যথা এই ব্যথা বুক থেকে হাতে চলে আসছে এমন মনে হতে পারে সাধারণত বাম হাতে এমন ব্যথা হয় তবে এই ব্যথা উভয় হাতেই যেতে পারে হাতের পাশাপাশি চোয়াল ঘাড় পিঠ ও পেটে ব্যথা যেতে পারে৩ মাথা ঘুরানো অথবা মাথা ঝিমঝিম করা৪ শরীরের ঘেমে যাওয়া৫ শ্বাসকষ্ট ৬ বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া৭ প্রচণ্ড উদ্বিগ্ন হয়ে পড়া রোগী অস্বাভাবিক অস্থিরতা অনুভব করবেন (প্যানিক অ্যাটাক) অথবা তিনি মারা যাচ্ছেন এমন মনে হবেমনে রাখতে হবে হার্ট অ্যাটাক হলেই সবার বুকে তীব্র ব্যথা হবে—এমনটি নয় কারও কারও ক্ষেত্রে ব্যথাটি বদহজম অথবা গ্যাস্ট্রিকের ব্যথার মতো সামান্য বা মৃদু হতে পারে কেউ কেউ আবার একেবারেই ব্যথা অনুভব করেন না বিশেষত অনেক নারী রোগীর ক্ষেত্রে এমনটি দেখা যায়এসব ক্ষেত্রে রোগীর আসলেই হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে কি না তা বুক ব্যথার তীব্রতার ওপর নয় বরং আনুষঙ্গিক লক্ষণগুলো পর্যবেক্ষণ করার মাধ্যমে নির্ধারণ করতে হয়হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে মনে হলে দেরি না করে হাসপাতালে যেতে হবে লক্ষণগুলো নিয়ে সন্দেহ থাকলেও চিকিৎসা নিতে দ্বিধা করা ঠিক নয় কারণ অন্য কোনো রোগের কারণে লক্ষণগুলো দেখা দিলে হাসপাতালে সেটিরও চিকিৎসা করা সম্ভব কিন্তু প্রকৃতপক্ষে হার্ট অ্যাটাক হয়ে থাকলে যদি সঠিক চিকিৎসা না নেওয়া হয় তাহলে রোগীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারেগুরুত্বপূর্ণ কিছু ক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাক হলে হার্ট রক্ত পাম্প করা একেবারে বন্ধ করে দিয়ে স্থবির হয়ে যেতে পারে এই ঘটনাকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট বলা হয়ে থাকে কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— রোগী শ্বাস নিচ্ছে না বলে মনে হওয়া রোগীর সব ধরনের নড়াচড়া বন্ধ হয়ে যাওয়া রোগীর সাথে কথা বললে বা তার গায়ে সজোরে ধাক্কা দিলেও কোনো সাড়া না পাওয়া যদি কারও কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট হচ্ছে বলে মনে হয় তাহলে সাথে সাথে রোগীকে সিপিআর (কার্ডিওপালমোনারি রিসাসিটেশন) দিতে হবে একই সাথে অন্যদের সাহায্য নিয়ে রোগীকে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করতে হবে সিপিআর দিয়ে আপনি কার্ডিয়াক অ্যারেস্টের রোগীর জীবন বাঁচাতে পারেন অ্যাম্বুলেন্স আসার আগে কীভাবে সিপিআর দিয়ে রোগীর জীবন বাঁচাতে পারেন জানতে নিচের ভিডিওটি দেখুনহার্ট অ্যাটাকের লক্ষণ আর্টিকেলে সিপিআর দেওয়ার নিয়ম সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছেবিস্তারিত পড়ুন হার্ট অ্যাটাক শনাক্তকরণ রোগীর হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে মনে হলে যত দ্রুত সম্ভব রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে হার্টের ওপরে চাপ কমাতে হাসপাতালে পৌঁছানোর পূর্বের সময়টুকুতে রোগীকে সম্পূর্ণ বিশ্রামে থাকতে হবে হাতের কাছে অ্যাসপিরিন (৩০০ মিলিগ্রাম) ট্যাবলেট থাকলে এবং রোগীর অ্যাসপিরিন জাতীয় ঔষধে কোনো অ্যালার্জি না থাকলে হাসপাতালে পৌঁছানো পর্যন্ত আস্তে আস্তে চিবিয়ে ট্যাবলেটটি খেতে পারেঅ্যাসপিরিন রক্ত পাতলা করে এবং হার্টে রক্ত সরবরাহ বাড়াতে সাহায্য করেহার্ট অ্যাটাক কতটা গুরতর সেটির ওপর নির্ভর করে হাসপাতালে সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি বেছে নেওয়া হয় প্রধান দুটি চিকিৎসা পদ্ধতি হলো—জমাট বাঁধা রক্ত ভাঙতে ঔষধ দেওয়া হার্টের রক্ত সরবরাহ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনতে অপারেশন করাবিস্তারিত পড়ুন হার্ট অ্যাটাকের চিকিৎসা হার্ট অ্যাটাকের প্রধান কারণ হলো রক্তনালী সম্পর্কিত হৃদরোগ বা করোনারি হার্ট ডিজিজহার্টে রক্ত সরবরাহকারী প্রধান রক্তনালীগুলোকে করোনারি আর্টারি বা ধমনী বলা হয় করোনারি হার্ট ডিজিজে এসব ধমনীর ভেতরে কোলেস্টেরল জমা হয়ে রক্তের স্বাভাবিক প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করে জমাট বাঁধা এসব কোলেস্টেরলকে প্ল্যাক বলা হয়হার্ট অ্যাটাকের আগে এমন একটি কোলেস্টেরল প্ল্যাক ফেটে যায় ফলে সেখানে রক্ত জমাট বাঁধে এই জমাট বাঁধা রক্ত হার্টে রক্ত সরবরাহে বাধা সৃষ্টি করেকিছু বিষয়ের কারণে করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় যেমন—ধূমপান করা উচ্চ রক্তচাপ রক্তে অতিরিক্ত কোলেস্টেরল থাকা খাদ্যে অস্বাস্থ্যকর চর্বিবহুল খাবার রাখা নিয়মিত শারীরিক পরিশ্রমের অভাব অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হওয়া ডায়াবেটিসএছাড়া আপনার বাবা অথবা ভাই ৫৫ বছর বয়সের আগে কিংবা আপনার মা অথবা বোন ৬৫ বছর বয়সের আগে হার্ট অ্যাটাক অথবা স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়ে থাকলে আপনারও করোনারি হার্ট ডিজিজে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাবেবিস্তারিত পড়ুন হার্ট অ্যাটাকের কারণ ও প্রতিরোধ হার্ট অ্যাটাকের পরে আরোগ্য লাভ করতে কতটুকু সময় লাগবে তা নির্ভর করে হার্টের পেশীগুলো কী পরিমাণে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সেটির ওপর বেশীরভাগ রোগীই হার্ট অ্যাটাকের পরে স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যেতে পারেন কেউ কেউ ২ সপ্তাহ পরেই কাজে যোগ দিতে পারেন আবার অন্যদের সুস্থ হয়ে উঠতে কয়েক মাস সময় লেগে যেতে পারে একজন রোগী কত দ্রুত কাজে ফিরতে পারবেন সেটি নির্ভর করে তার স্বাস্থ্য হার্টের অবস্থা ও কাজের ধরনের ওপরআরোগ্য লাভের প্রক্রিয়ার মূল উদ্দেশ্য হলো—১ জীবনধারায় বিভিন্ন স্বাস্থ্যকর পরিবর্তনের সমন্বয় ঘটিয়ে (যেমন স্বাস্থ্যকর ও সুষম ডায়েট) এবং রক্তের কোলেস্টেরল কমানোর ঔষধ (যেমন স্ট্যাটিন গ্রুপের ঔষধ) সেবনের মাধ্যমে পুনরায় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে আনা২ ধীরে ধীরে শারীরিক সুস্থতা বা ফিটনেস ফিরিয়ে আনা যেন রোগী স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন এই প্রক্রিয়াকে কার্ডিয়াক পুনর্বাসন বলা হয় হার্ট অ্যাটাকের ফলে সৃষ্ট জটিলতাগুলো গুরুতর—এমনকি প্রাণঘাতী হতে পারে এসব জটিলতার মধ্যে রয়েছে—অ্যারিদমিয়া সহজ ভাষায় অস্বাভাবিক হৃৎস্পন্দন বা হার্টবিটকে অ্যারিদমিয়া বলা হয় এক ধরনের অ্যারিদমিয়াতে হার্ট প্রথমে খুব দ্রুত স্পন্দন বা পাম্প করতে শুরু করে এরপর হঠাৎ হার্টে খিঁচুনির মতো অবস্থা শুরু হয়ে যায় এবং হার্ট কাজ করা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করে দেয় (কার্ডিয়াক অ্যারেস্ট) কার্ডিওজেনিক শক এক্ষেত্রে হার্ট অ্যাটাকের পরে হার্টের পেশীগুলো এতটাই দুর্বল হয়ে পড়ে যে হার্ট স্বাভাবিক শারীরিক কার্যকলাপ চালিয়ে যাওয়ার জন্য দেহে যথেষ্ট পরিমাণ রক্ত সঞ্চালন করতে ব্যর্থ হয় হার্ট রাপচার এই অবস্থায় হার্টের পেশী দেয়াল অথবা ভেতরের ভালভগুলোর যেকোনোটি ছিঁড়ে বা ফেটে যেতে পারেএসব জটিলতা হার্ট অ্যাটাকের অল্প সময়ের মাঝেই দেখা দিতে পারে এগুলো হার্ট অ্যাটাক জনিত মৃত্যুর প্রধান কারণ এসব জটিলতা থেকে অনেকে হাসপাতালে পৌঁছানোর পূর্বে কিংবা হার্ট অ্যাটাক হওয়ার এক মাসের মধ্যে আকস্মিকভাবে মৃত্যুবরণ করতে পারেনএকজন রোগীর মধ্যে এসব জটিলতা কতটুকু প্রভাব ফেলবে সেটি কয়েকটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করে যেমন—বয়স বাড়ার সাথে বিভিন্ন গুরুতর জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় হার্ট অ্যাটাকের ধরনটি কতটা গুরুতর এবং অ্যাটাকের ফলে হার্টের পেশীগুলো কতটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার ওপর জটিলতার তীব্রতা নির্ভর করেএ ছাড়া লক্ষণ দেখা দেওয়ার পর থেকে চিকিৎসা শুরু করতে যতটুকু সময় লাগে সেটি বিভিন্ন জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনার ওপর প্রভাব ফেলেবিস্তারিত পড়ুন হার্ট অ্যাটাকের জটিলতা হার্ট অ্যাটাক প্রতিরোধ করার পাঁচটি প্রধান উপায় এখানে তুলে ধরা হয়েছে ইতোমধ্যে হার্ট অ্যাটাক হয়েছে এমন ব্যক্তিও এই পাঁচটি উপদেশ মেনে চলার মাধ্যমে পুনরায় হার্ট অ্যাটাক হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারবেন উপায়গুলো হলো—১ ধূমপানের অভ্যাস থাকলে সেটি ছেড়ে দিতে হবে২ শরীরের ওজন বেশি হলে সেটি কমিয়ে ফেলতে হবে৩ নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিদের সপ্তাহে কমপক্ষে আড়াই ঘণ্টা মাঝারি ধরনের ব্যায়াম করা উচিত প্রথমবারের মতো ব্যায়াম করা শুরু করার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৪ খাবারে ফ্যাটের পরিমাণ কমিয়ে পূর্ণশস্য (যেমন ঢেঁকিছাটা চাল বা লাল চাল ও লাল আটার রুটি) সহ ফাইবারযুক্ত খাবার বেশি বেশি খেতে হবে এছাড়া প্রতিদিনের খাবার তালিকায় প্রচুর ফলমূল ও শাকসবজি রাখতে হবে৫ মদপানের অভ্যাস থাকলে সেটি ছেড়ে দিতে হবে গর্ভবতী হওয়ার প্রথম সপ্তাহে কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষণ থাকে না গর্ভবতী হওয়ার প্রথম ১ মাস মায়েরা সাধারণত বুঝতেই পারেন না যে তারা গর্ভধারণ করেছেন প্রথম যে লক্ষণটি গর্ভবতী মায়েরা খেয়াল করে তা হলো পিরিয়ড বাদ যাওয়া উল্লেখ্য গর্ভবতী নারীর সর্বশেষ মাসিকের প্রথম দিন থেকে তার গর্ভকালের শুরু ধরা হয় আমরা জেনেছি গর্ভাবস্থায় প্রথম যে উল্লেখযোগ্য লক্ষণটি দেখা যায় তা হল পিরিয়ড বন্ধ হয়ে যাওয়া এ ছাড়া কারো কারো ক্ষেত্রে আরও কিছু লক্ষণ উপস্থিত থাকতে পারে যেমন মাথা ঘুরানো চাপ দিলে স্তনে ব্যথা অনুভব করা বমি বমি লাগা ক্লান্তি অনুভব করা তবে এসব লক্ষণ থাকলেই যে আপনি গর্ভবতী তা সুনিশ্চিতভাবে বলা সম্ভব নয়আপনি গর্ভবতী কি না তা জানার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হল প্রেগন্যান্সি টেস্ট করা আপনি প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিটের সাহায্যে খুব সহজে ঘরে বসেই জেনে নিতে পারেন আপনি গর্ভবতী কি না এই কিটগুলো আপনি সাধারণ ওষুধের দোকান বা ফার্মেসি থেকেই কিনতে পারবেন এ ছাড়া নিকটস্থ কোনো ক্লিনিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র হাসপাতাল বা গাইনী ডাক্তারের চেম্বারে গিয়েও আপনি প্রেগন্যান্সি টেস্ট করাতে পারেন আপনার যদি কোনো মাসের পিরিয়ড বাদ যায় এবং আপনি যদি এর আগের সময়ে অনিরাপদ সহবাস করে থাকেন অর্থাৎ কোনো জন্মনিরোধক (কনডম পিল বা বড়ি ইনজেকশন) ব্যবহার না করে সহবাস করে থাকেন সেক্ষেত্রে যখনই দেখবেন যে নির্দিষ্ট তারিখে পিরিয়ড শুরু হয়নি তখনি আপনি প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিতে পারেনপিরিয়ড শুরু হওয়ার সম্ভাব্য তারিখটি জানা না থাকলে অনিরাপদ সহবাসের কমপক্ষে ২১ দিন পরে টেস্ট করেও আপনি জেনে নিতে পারবেন আপনি গর্ভধারণ করেছেন কি না এ ছাড়া আজকাল অনেক উন্নত প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট পাওয়া যায় যার সাহায্যে গর্ভধারণের নয় দিন পরেই আপনি গর্ভবতী হয়েছেন কি না তা জানা সম্ভব বাসায় প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার জন্য আপনার নিকটস্থ ফার্মেসি বা সুপারশপ থেকে প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট/বক্স কিনে নিন দিনের যেকোনো সময়ের প্রস্রাবের নমুনা নিয়ে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করা যায় প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট/স্টিকের উপর প্রস্রাব করার পর সাধারণত কয়েক মিনিটের মধ্যেই ফলাফল দেখায় একেকটি টেস্ট কিটের ধরন একেকরকম তাই ব্যবহারের আগে অবশ্যই বক্সের গায়ে লেখা নির্দেশাবলী ভালোমতো পড়ে নিবেন প্রেগন্যান্সি টেস্ট এর মাধ্যমে গর্ভধারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার পর আপনার প্রাথমিক করণীয় হবে একজন স্বাস্থ্যকর্মী বা সম্ভব হলে একজন গাইনী ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করে চেকআপ করিয়ে সুনিশ্চিত হওয়া এবং ডাক্তার যেসব পরামর্শ দিবে সেসব মেনে চলা গর্ভাবস্থার এই সময়টাতে সাধারণত নিচের বিষয়গুলো মেনে চলার পরামর্শ দেয়া হয়–গর্ভবতী হওয়ার প্রথম ৩ মাস বা ১২তম সপ্তাহ পর্যন্ত দৈনিক ৪০০ মাইক্রোগ্রাম ফলিক এসিড সেবন করতে হবে ফলিক এসিড ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায়দৈনিক ১০ মাইক্রোগ্রাম ভিটামিন ডি ট্যাবলেট সেবন করতে পারেনগর্ভাবস্থায় নানান রকম ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে তাই এসময় কাঁচা বা ভালোভাবে রান্না হয়নি এমন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে অবশ্যই ধূমপান অতিরিক্ত চাকফি পান মদপান করা এড়িয়ে চলা উচিত মাসিক মিস হওয়ার প্রথম দিনই আপনি প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে পারেন সাধারণত মাসিক মিস হওয়ার প্রথম দিনেই আপনি গর্ভবতী কি না তা জানা যায় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার প্রস্রাবে হরমোনের পরিমাণ কম থাকতে পারে এমনটা হলে আপনি গর্ভবতী হলেও টেস্টের ফলাফল নেগেটিভ আসতে পারে তাই মাসিক মিস হওয়ার প্রথম দিন টেস্ট করার পর ফলাফল নেগেটিভ আসলে আপনি কয়েকদিন পর আবার টেস্ট করতে পারেন প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট কিনে রাখুন ও ডাক্তারের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিনআগামী সপ্তাহে সময়মতো মাসিক না হলে পরীক্ষা করার জন্য প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট কিনে রাখুন কিভাবে টেস্ট করতে হয় সেটাও এখনি শিখে রাখতে পারেন গর্ভধারণ করলে কোন ডাক্তার দেখাবেন সে ব্যাপারেও সিদ্ধান্ত নিয়ে নিন ধূমপানের আশেপাশে থাকবেন না আপনার আশেপাশে কেউ ধূমপান করলে তা আপনার গর্ভের শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারেতাই বাসায় কেউ ধূমপান করলে তাদের সাথে এই ব্যাপারে আলাপ করুন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র সুস্থভাবে বিকশিত হওয়ার জন্য প্রতিদিন আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া প্রয়োজন এ ব্যাপারে যদি আগে থেকে না জেনে থাকেন তাহলে দেরি না করে এ সপ্তাহ থেকেই আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করে দিন আপনি বাইরে থেকে এখনো তেমন কিছু টের না পেলেও আপনার শরীরের ভেতরে অনেক কিছু ঘটছে গত সপ্তাহে আপনার ডিম্বাণু আর সঙ্গীর শুক্রাণুর মিলন হয়ে যে ভ্রূণ তৈরি হয়েছে সেটা এ সপ্তাহে নিজের জন্য ভালোভাবে বাসা বেধে নিচ্ছেগত সপ্তাহে ভ্রূণটা ডিম্বনালি বেয়ে জরায়ুতে চলে এসেছে এবং এ সপ্তাহে জরায়ুর গায়ে সে নিজেকে পুরোপুরি গেঁথে নিচ্ছেএখানেই সে আগামী মাসগুলোতে বেড়ে উঠবেভ্রূণ আকারে এখনো খুব ছোটো—মাত্র একটা পোস্তদানার সমান লম্বা এই ক্ষুদ্র ভ্রূণে আছে এক দলা কোষ যা মোটা দাগে দুই ভাগে বিভক্ত—বাইরের দিকের কোষ এবং ভেতরের দিকের কোষবাইরের দিকের কোষগুলো থেকে গর্ভফুল তৈরি হবে যা গর্ভের শিশুকে অক্সিজেন আর পুষ্টির জোগান দিবে আর ভেতরের দিকের কোষগুলো থেকে ধীরে ধীরে শিশুর দেহের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি হবে আপনি সম্ভবত এখনো বুঝতে পারেননি যে আপনি গর্ভবতী তাই গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন এমন সপ্তাহগুলোতে যা জানা প্রয়োজন সে বিষয়গুলো আমরা এখানে তুলে ধরছি মাসিক হতে দেরি হওয়া—হতে পারে গর্ভধারণের প্রথম লক্ষণ গর্ভধারণের সবচেয়ে কমন লক্ষণ হলো মাসিক বা পিরিয়ড না হওয়া যেটা হয়ত আপনি আগামী সপ্তাহে টের পাবেন গর্ভধারণের পর ভ্রূণের কোষগুলো বিশেষ এক ধরনের হরমোন তৈরি করে যার নাম সংক্ষেপে এইচসিজি (hCG) এই হরমোনের করণে মাসিক হওয়া বন্ধ হয়এই হরমোন নিয়ে আরেকটা মজার তথ্য হলো বাজারে যেসব প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিনতে পাওয়া যায় সেগুলো প্রস্রাবে মূলত এই হরমোনের উপস্থিতি খুঁজে পাওয়ার চেষ্টা করেহরমোনটি ধরা পড়লে প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসে যা হয়ত আপনি আগামী সপ্তাহেই দেখতে পাবেনগর্ভবতী হওয়ার অন্যান্য লক্ষণঃকারও কারও ক্ষেত্রে এই পর্যায়ে গর্ভধারণের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ দেখা যেতে পারেযেমন— স্তনে হালকা ব্যথা হওয়া বা চাপ দিলে ব্যথা করা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্লান্তি বমি বমি ভাব বা বমি পেটে অস্বস্তি বা পেট ফাঁপা হয়েছে এমন মনে হওয়া সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা হওয়া ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা প্রিয় কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা মুখে অদ্ভুত স্বাদ পাওয়া প্রখর ঘ্রাণশক্তিএর মধ্যে কিছু লক্ষণ কারো কারো ক্ষেত্রে মাসিকের আগে আগে দেখা দেয় যেমন স্তনে ব্যথা পেট ফাঁপা ও কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষাআবার অনেকের ক্ষেত্রেই এই সময়টাতে কোনো লক্ষণ দেখা যায় না ফলে গর্ভধারণের ব্যাপারটা আঁচ করতে দেরি হয়প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট কেনাআগামী সপ্তাহে নির্ধারিত সময়ে মাসিক না হলে আপনি হয়তো চিন্তা করবেন গর্ভধারণ হলো কি না তখন পরীক্ষা করার জন্য প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিনে রাখতে পারেনপ্রেগন্যান্সি টেস্টের মাধ্যমে আপনি গর্ভধারণ করেছেন কি না সেটি নির্ধারণ করা যাবে গর্ভধারণের ব্যাপারে যত তাড়াতাড়ি নিশ্চিত হতে পারবেন তত দ্রুত আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য সঠিক পদক্ষেপগুলো নিতে পারবেনকখন ও কীভাবে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করতে হয় তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই লেখাটি পড়তে পারেন কোন ডাক্তার দেখাবেন তা নিয়ে আগেভাগেই খোঁজখবর নেওয়া গর্ভধারণের পরে যত দ্রুত সম্ভব চেকআপ করানো প্রয়োজন আপনার সুস্বাস্থ্য ও গর্ভের শিশু সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য এই চেকআপ খুবই জরুরিতাই প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসার পর পরই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন কোন ডাক্তার দেখাবেন এখনো ঠিক না করে থাকলে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করুন এ বিষয়ে আপনার সঙ্গীর সাহায্য নিতে পারেন তিনি সম্ভাব্য ডাক্তারদের তালিকা চেম্বারের ঠিকানা ও রোগী দেখার শিডিউলগুলো বের করতে সাহায্য করতে পারবেন এতে আপনার সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হতে পারে খাবারে অন্তত ৪০০ গ্রাম ফলমূল ও শাকসবজি রাখা এসময়ে একটা স্বাস্থ্যকর খাবার তালিকা মেনে চলা বিশেষভাবে জরুরি কারণ আপনার খাবার থেকেই মূলত আপনার ও গর্ভের শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও শক্তির যোগান আসে নিজেকে ও গর্ভের শিশুকে সুস্থ রাখতে একটা সুষম খাবার তালিকা মেনে চলবেন প্রতিদিন অন্তত ৪০০ গ্রাম ফল ও শাকসবজি খাবেন প্রতি বেলায় খাওয়ার সময়ে অর্ধেক প্লেট পরিমাণ শাকসবজি ও ফল খেতে পারেন তিনবেলা এভাবে খেলে অনেকখানি ফল ও শাকসবজি খাওয়া হয়ে যাবে প্রতি বেলার খাবারের মাঝে হালকা নাস্তা হিসেবেও বিভিন্ন ফল শসা গাজর অথবা টমেটো খেতে পারেন এর সাথে পর্যাপ্ত পানি পান করবেন আপনার সঙ্গী এখনো হয়তো বুঝতে পারেনি যে সে গর্ভবতী ফলে আপনিও হয়ত জানেন না যে আপনি বাবা হতে চলেছেন তাই গর্ভধারণের চেষ্টা করছেন এমন সপ্তাহগুলোতে যা করনীয় সে বিষয়গুলো আমরা এখানে তুলে ধরছি দুজনে মিলে দিনের খাবারের পরিকল্পনা করুন গর্ভাবস্থার প্রথম সপ্তাহগুলোতে শিশুর সুস্থ বিকাশের জন্য সুষম খাদ্যাভ্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ দুজনে মিলে দিনের খাবারগুলো পরিকল্পনা করতে পারেন যাতে বেশি বেশি শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়া হয় এবং প্রক্রিয়াজাত খাবার কম খাওয়া হয় বাজারসদাইয়ে সচেতন হোন কী খাবেন সেটা পরিকল্পনা করা হয়ে গেলে সেই অনুযায়ী বাজার করতে সাহায্য করুন বাজার করার দায়িত্ব আপনার হলে এসময়ে বেশি বেশি ফল ও শাকসবজি কিনবেন কয়েক ধরনের ফল ও শাকসবজি কিনে নিতে পারেন তাহলে খেতে একঘেয়ে লাগবে না স্বাদে ভিন্নতা আসার পাশাপাশি বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদানও পাওয়া যাবে অন্যদিকে প্রক্রিয়াজাত খাবার কিনে ফেলা সহজ অপশন হলেও সেটা স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয় তাই এসব খাবার যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলবেন ধূমপান ছেড়ে দিন ধূমপানের আশেপাশে গর্ভবতী মা থাকলে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে শিশু প্রিম্যাচিউর হওয়া বা সময়ের আগে প্রসব হওয়া ওজন কম হওয়া জন্মগত ত্রুটি হওয়াসহ নানান জটিলতার সম্ভাবনা বাড়ে তাই আপনি ধূমপান করলে সেটা ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন বাসায় অন্য কেউ ধূমপান করলে তার সাথে এই ব্যাপারে আলাপ করুন ব্যায়ামে উৎসাহ দিতে ভুলবেন না অনেকেই মনে করেন যে গর্ভাবস্থায় হয়তো ব্যায়াম করা যাবে না এটা সঠিক নয় বরং মা ও গর্ভের শিশুর জন্য ব্যায়াম অনেকভাবে উপকার করে এমনকি ডেলিভারির সময়ে সিজারের প্রয়োজন হওয়ার সম্ভাবনাও কমাতে পারে তাই সঙ্গীকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে উৎসাহ দিন সম্ভব হলে আপনিও সময় বের করে নিয়ে দুজনে একসাথে ব্যায়াম করুন প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে ফেলুন গর্ভধারণের সবচেয়ে কমন লক্ষণগুলোর মধ্যে একটা হলো সময়মত মাসিক না হওয়া এ সপ্তাহে আপনার মাসিক সময়মত শুরু না হলে বাসায় বসেই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে ফেলুন ডাক্তারের কাছে চেকআপে যাওয়ার ব্যবস্থা করুন কী করলে মা ও শিশু সুস্থ থাকবে কোন ওষুধ খেতে হবে কোন পরীক্ষা করতে হবে এসব জানার জন্য গর্ভধারণের পর পরই দ্রুত ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন কোন ডাক্তার দেখালে ভালো হবে সে ব্যাপারে আপনার সঙ্গীর সাহায্য নিতে পারেন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান গর্ভের শিশুর ব্রেইন স্নায়ুতন্ত্র ও অন্যান্য অঙ্গ যাতে স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠে সেজন্য নিয়মিত আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান বাইরে থেকে তেমন বোঝা না গেলেও আপনার গর্ভের শিশু খুব দ্রুত বেড়ে উঠছে তবে সে আকারে এখনো খুব ছোটো—কেবল একটা তিলের দানার সমান লম্বা (২ মিলিমিটারের কাছাকাছি) এ সপ্তাহে শিশুর হার্ট বিট করা শুরু করবে আপনার শিশুর হার্ট বা হৃৎপিণ্ড তৈরি হতে শুরু করেছে এ সপ্তাহে তার ছোট্ট হার্ট জীবনে প্রথমবারের মতো স্পন্দিত হবে[২][৩] পাশাপাশি শিশুর কিছু নিজস্ব রক্তনালী ইতোমধ্যেই তৈরি শুরু হয়ে গিয়েছে আপনার ছোট্টমণির শরীর নিজস্ব রূপ নিতে শুরু করেছে আপনার শিশুর শরীর এখন হাতেগোনা কিছু কোষ দিয়ে তৈরি তবে এর মধ্যেই সে একটা ছোট্ট শিশুর রূপ নিতে শুরু করেছে এখন তার মাথা বড় হচ্ছে মুখের নিজস্ব আদল তৈরি হচ্ছে শিশুর ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্রের অন্যান্য অংশও দ্রুত বিকশিত হচ্ছেশরীরের সবগুলো অঙ্গের ভিত তৈরি হচ্ছেগত সপ্তাহে শিশুর দেহের কোষগুলো মোটা দাগে দুই ভাগে ভাগ করা ছিল—বাইরের কোষ আর ভেতরের কোষ ভেতরের কোষগুলো থেকে ধীরে ধীরে শিশুর দেহের বিভিন্ন অঙ্গ তৈরি হচ্ছে অঙ্গ তৈরির এই কোষগুলো এ সপ্তাহে তিনটি স্তরে ভাগ হয়ে যাবেশুনতে একটু আশ্চর্য লাগতে পারে কিন্তু এই তিনটি স্তর থেকেই এক এক করে আপনার ছোট্টমণির সবগুলো অঙ্গপ্রত্যঙ্গ তৈরি হয়ে যাবে বাইরে থেকে কেউ হয়তো আপনার মধ্যে তেমন কোনো পরিবর্তন লক্ষ করছে না এমনকি আপনি নিজেও হয়তো এখনো সেভাবে কিছু টের পাচ্ছেন না কিন্তু আপনার শরীরের ভেতরে এখন কিছু অসাধারণ ঘটনা ঘটছে⁠—একটা নতুন জীবন গড়ে উঠছেমাসিক হতে দেরি হওয়াপিরিয়ড বা মাসিক সময়মতো না হওয়ায় আপনি হয়তো এ সপ্তাহে গর্ভধারণের ব্যাপারটা আঁচ করতে পারেন অবশ্য আপনার মাসিক যদি প্রতি মাসে নির্দিষ্ট সময়ে না হয়ে কিছুটা আগে বা পরে হয় তাহলে গর্ভধারণের ব্যাপারটি টের পেতে আরও একটু সময় লাগতে পারেসময়মতো মাসিক না হলে অথবা গর্ভধারণ করেছেন বলে ধারণা করলে বাড়িতে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করান অনেকে এটাকে কাঠি পরীক্ষা নামে চেনেন মাসিক মিস হওয়ার প্রথম দিনই আপনি এই পরীক্ষা করাতে পারেনসচরাচর যেসব প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিট পাওয়া যায় সেগুলোর প্যাকেটের ভেতরে ১–২টা লম্বা কাঠি থাকে কাঠিতে প্রস্রাব করার কয়েক মিনিটের মধ্যে কাঠির নির্ধারিত স্থানে ফলাফল ভেসে ওঠে তবে ব্র্যান্ডভেদে প্রেগন্যান্সি টেস্ট কিটের ব্যবহারবিধি কিছুটা ভিন্ন হতে পারেতাই আগে প্যাকেটের ভেতরের নির্দেশিকা অনুযায়ী প্রেগন্যান্সি টেস্ট করার পদ্ধতি পড়ে নিবেন এরপর সহজেই ঘরে বসে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে ফেলতে পারবেনফলাফল পজিটিভ আসলে অনেকটা নিশ্চিতভাবেই বলা যায় যে আপনি গর্ভবতী তবে ফলাফল নেগেটিভ আসলে আপনি গর্ভবতী নন তা নিশ্চিতভাবে বলা যায় না কারণ নেগেটিভ আসার পেছনে আরও কিছু কারণ থাকতে পারেপ্রেগন্যান্সি টেস্টের ফলাফল বের করা নিয়ে আরও জানতে আমাদের এই লেখাটি পড়তে পারেনইমপ্ল্যান্টেশন ব্লিডিংগর্ভধারণ করলে মাসিকের রাস্তা দিয়ে হালকা রক্তপাত হতে পারে মায়ের জরায়ুর গায়ে যখন ভ্রূণ এসে গেঁথে বসে তখন এই রক্তপাত দেখা দেয় এটাকে ইমপ্ল্যান্টেশন ব্লিডিং বলে যখন মাসিক হওয়ার কথা সেই সময়ের আশেপাশে এই রক্তপাত দেখা দেয় ফলে এটাকে অনেকে ভুলে মাসিকের রক্তপাত মনে করেন তবে সবার ক্ষেত্রে এই ইমপ্ল্যান্টেশন ব্লিডিং দেখা যায় নাআপনার যদি মনে হয় যে মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাতের ধরন বা প্যাটার্নটা অন্য সময়ের মাসিকগুলোর সাথে মিলছে না তাহলে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিতে পারেন প্রথম চেকআপগর্ভধারণের পর যত দ্রুত সম্ভব চেকআপ করানো প্রয়োজন আপনার সুস্বাস্থ্য ও গর্ভের শিশু সঠিকভাবে বেড়ে ওঠার জন্য এই চেকআপ খুবই জরুরি[৬] তাই প্রেগন্যান্সি টেস্ট পজিটিভ আসার পর পরই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন কোন ডাক্তার দেখাবেন এখনো ঠিক করে না থাকলে এ সপ্তাহেই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন এ বিষয়ে আপনার সঙ্গীর সহায়তা নিতে পারেনচেকআপে আপনাকে কিছু রক্ত পরীক্ষা আর প্রস্রাব পরীক্ষা করতে পরামর্শ দেয়া হবে যাতে রক্তস্বল্পতা বা প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশনের মত কোনো সমস্যা থাকলে সেগুলো আগেভাগেই ধরে ফেলে চিকিৎসা করা যায়কীভাবে এই চেকআপের জন্য প্রস্তুতি নিবেন কোথায় এই চেকআপ করাতে পারবেন এবং চেকআপে কী কী করা হয়—এসব নিয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের গর্ভকালীন চেকআপ লেখাটি পড়ুনগর্ভধারণ করার পর মানসিক অবস্থাআপনি গর্ভবতী—এটা জানার পর মনে আনন্দউচ্ছ্বাসের পাশাপাশি একটুআধটু চিন্তাও ঘোরাঘুরি করতে পারে এসময়ে দুশ্চিন্তা হওয়াটা স্বাভাবিক এসব চিন্তাদুশ্চিন্তা নিজের মধ্যে না রেখে আপনার সঙ্গী কিংবা পরিবারের বিশ্বস্ত কোনো সদস্যের সাথে ভাগাভাগি করে নিনডাক্তারকেও আপনার মানসিক অবস্থার কথা জানাতে পারেন মনকে হালকা করার জন্য পছন্দের গান অথবা আবৃত্তি শুনতে পারেন মেডিটেশন ও নিঃশ্বাসের ব্যায়ামও করতে পারেনঅন্যান্য লক্ষণগর্ভধারণের পর ভ্রূণের কোষগুলো বিশেষ এক ধরনের হরমোন তৈরি করে যার নাম সংক্ষেপে এইচসিজি (hCG) এই হরমোনের ফলে মাসিক হওয়া বন্ধ হয় পাশাপাশি ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন নামের হরমোনগুলোও আপনার দেহে এখন বেশি পরিমাণে আছে এসব হরমোনের প্রভাবে মাসিক বন্ধ থাকার পাশাপাশি আপনার শরীরে গর্ভাবস্থার আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারেএসব লক্ষণ থেকে গর্ভধারণের বিষয়টি প্রাথমিকভাবে অনুমান করা যায় কয়েকটা লক্ষণ আপনার মধ্যে থাকতে পারে আবার কোনো লক্ষণই দেখা নাও দিতে পারে সবগুলোই স্বাভাবিক লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্লান্ত লাগা স্তনে হালকা ব্যথা হওয়া বা চাপ দিলে ব্যথা করা বমি বমি ভাব বা বমি একে অনেকসময় মর্নিং সিকনেস বলে তবে এই বমি ভাব দিনের যেকোনো সময়েই হতে পারে খাবারের অভ্যাসে লক্ষণীয় পরিবর্তন আসা হঠাৎ প্রিয় কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা দিতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু খাবারের গন্ধে বমি বমিও লাগতে পারে ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারেঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা মুখে অদ্ভুত/ধাতব স্বাদ পাওয়া তীব্র ঘ্রাণশক্তি সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা অনুভব করা পেটে অস্বস্তি বা পেট ফাঁপা হয়েছে এমন মনে হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি রঙের ছোপ ছোপ দাগ পড়া ঘন ও ঝলমলে চুল আপনার সঙ্গী হয়তো এ সপ্তাহে প্রথমবারের মতো ধারণা করতে পারবেন যে তিনি গর্ভবতী পরিবারে নতুন সদস্য যোগ হওয়ার সংবাদটি একদিকে যেমন আনন্দউচ্ছ্বাস সৃষ্টি করতে পারে তেমনি নানান চিন্তা ও ভয় এসে হাজির হতে পারে এই গুরুত্বপূর্ণ সময়ে সঙ্গীর পাশে থাকা গুরুত্বপূর্ণডাক্তারের ব্যাপারে খোঁজখবর নিতে সহায়তা করুনগর্ভধারণের পরে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন কোন ডাক্তার দেখালে ভালো হবে আপনার সঙ্গীকে এই সিদ্ধান্ত নিতে সহায়তা করুন যেসকল ডাক্তার দেখানোর সুযোগ আছে তাদের কয়েকজনের ব্যাপারে খোঁজখবর নিন তারা কোথায় বসেন কোথায় ডেলিভারি করান ছুটিতে গেলে কাকে দায়িত্ব দিয়ে যান ডেলিভারিতে খরচ কেমন লাগে—এ বিষয়গুলো জানা থাকলে সিদ্ধান্ত নেওয়া সহজ হবেগর্ভকালীন চেকআপে সঙ্গীর সাথে আপনিও যানগর্ভকালীন চেকআপগুলোতে আপনিও সাথে যাওয়ার চেষ্টা করুন বিশেষ করে প্রথম চেকআপটা মিস করবেন না কারণ এই চেকআপে গর্ভাবস্থা নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা করা হয় কী কী নিয়ম মেনে চলা লাগবে কোন কোন ওষুধ খাওয়া প্রয়োজন কোথায় কোন টেস্ট করাতে হবে কত ঘন ঘন ডাক্তার দেখাতে হবে জরুরি অবস্থায় কোথায় যোগাযোগ করবেন—এসব নিয়ে আলোচনা হয় যা আপনারও জানা থাকা প্রয়োজনচেকআপের দিনক্ষণ অনুযায়ী আগে থেকেই সময় বের করে রাখুন রাস্তার ট্র্যাফিক ও সিরিয়ালের জন্য অপেক্ষার সময়টা হিসাব করতে ভুলবেন না অফিসে কাজ করলে আগে থেকেই বিষয়টা জানিয়ে রাখুন প্রয়োজনে আধাবেলা ছুটি নিয়ে রাখতে পারেনগর্ভকালীন সময়ের সুন্দর স্মৃতিগুলো সাজিয়ে রাখাএই সময়টাতে শিশুর জন্য একটা সুন্দর উপহার তৈরি করা শুরু করতে পারেন শিশু গর্ভে থাকা অবস্থায় আপনাদের সুন্দর স্মৃতিগুলো একটা জায়গায় গুছিয়ে রাখুন যেমন যেদিন আপনারা গর্ভধারণের বিষয়টা জানতে পেরেছেন সেদিনের খবরের কাগজের প্রথম পাতাটা হয়তো রেখে দিলেনশিশুর কী কী নাম রাখার চিন্তা করছেন সেগুলো ছোটো ছোটো কাগজে লিখে রাখতে পারেন ছোট্টমণির বিষয়ে নেওয়া এমন ছোটোবড় নানান সিদ্ধান্ত ও পরিকল্পনা তুলে রাখতে পারেনএটা গর্ভধারণের পুরো যাত্রার একটা রেকর্ড হয়ে থাকবে এখন কাজটা খুব সামান্য মনে হতে পারে কিন্তু অনেক বছর পর যখন আপনার শিশু বড় হয়ে যাবে তখন তার জন্য এটা অসাধারণ স্মৃতিগুলোর ভাণ্ডার হয়ে থাকবেগর্ভধারণের সংবাদ অন্যদের জানাবেন কি না সিদ্ধান্ত নিনআপনি হয়তো বাবা হওয়ার খবরটা অন্যদের জানাতে মুখিয়ে আছেন কিন্তু শিশুর মা এখনই অন্যদের সাথে এই খবরটা ভাগাভাগি করে নিতে প্রস্তুত কি না সেটা না জেনে খবরটা শেয়ার না করাই ভালোতার মনে হয়তো প্রথমদিকে মিসক্যারেজের সম্ভাবনা নিয়ে দুশ্চিন্তা থাকতে পারে আরও অনেক কারণে সংকোচ ভর করতে পারে তাই দুজনে মিলে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন কবে নাগাদ সুসংবাদটা অন্যদের জানাবেনবাবা হওয়ার সংবাদ পেলে কী বলবেনপ্রথম যখন আপনি বাবা হওয়ার কথাটা জানতে পারবেন তখন আপনার সঙ্গীকে কী বলবেন তা আগে থেকেই ভেবে রাখতে পারেন শিশুর মা যেমন আবেগ নিয়ে আপনাকে বিষয়টা জানাবেন আপনিও সেই আবেগের প্রতিফলন ঘটানোর চেষ্টা করতে পারেন সঙ্গীর উচ্ছ্বাসে আপনিও উচ্ছ্বাস দেখানোর চেষ্টা করুনসঙ্গী দুশ্চিন্তায় থাকলে অন্তত প্রথম কয়েক মিনিট আপনার উচ্ছ্বাস কিছুটা দমিয়ে রাখতে পারেন এসময়ে উৎসাহ দেওয়ার মতো দুইএকটা সাপোর্টিভ কথা বলতে পারেন যেমন নতুন অতিথি কিভাবে আপনাদের পরিবারকে আনন্দে রাঙিয়ে তুলবে তা নিয়ে কথা বলে পরিবেশ হালকা করার চেষ্টা করতে পারেন সিজারের সম্ভাবনা কমাতে নিয়মিত ব্যায়াম করুন ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলে এখন থেকে অল্প অল্প করে শুরু করুন নিয়মিত ব্যায়াম করলে সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব হওয়ার সম্ভাবনা কমতে পারে গর্ভকালীন চেকআপের কাগজপত্র সযত্নে রাখুন এখনো গর্ভকালীন চেকআপ না করিয়ে থাকলে এই সপ্তাহেই ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন চেকআপে আপনাকে দেওয়া কার্ড বই বা প্রেসক্রিপশন একটা জায়গায় গুছিয়ে রাখুন যাতে প্রয়োজনের সময়ে দ্রুত খুঁজে পাওয়া যায় কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আগ্রহ হওয়া স্বাভাবিক অস্বাস্থ্যকর কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আগ্রহ হলে তার পরিবর্তে কাছাকাছি স্বাদের স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন যেমন মিষ্টি খেতে খুব ইচ্ছা করলে তার বদলে মিষ্টি ফল খেতে পারেন নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করুন এখনো শুরু না করে থাকলে এ সপ্তাহ থেকেই প্রতিদিন আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন করা শুরু করুন শিশু সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য এই ট্যাবলেট খুব গুরুত্বপূর্ণ আপনাকে দেখে হয়তো এখনো গর্ভবতী মনে হচ্ছে না তবে আপনার গর্ভের শিশু খুব দ্রুত বেড়ে উঠছে সে এখন প্রায় ৬ মিলিমিটার লম্বা—এক দানা মসুর ডালের সমান শুনতে তেমন বড় মনে না হলেও শিশু এখন গত সপ্তাহের আকারের প্রায় তিনগুণ লম্বা গর্ভের ভেতরে শিশু এসময়ে ঘুমানোর মতো করে শরীর বাঁকিয়ে থাকে ছোট্ট শিশু দেখতে এখন ব্যাঙাচির মতো শিশুর সারা শরীর এখন এক স্তর পাতলা ও স্বচ্ছ ত্বক দিয়ে আবৃত তার এখন একটা ছোট্ট লেজ আছে তাই দেখতে কিছুটা ব্যাঙাচির মতো লাগে কয়েক সপ্তাহ পর এই লেজ মিলিয়ে যাবে শিশুর হার্ট বিট করছে ছোট্টমণির হার্ট এখন সচল কোনো কারণে যদি ডাক্তার এই সপ্তাহে যোনিপথ দিয়ে (ট্রান্সভ্যাজাইনাল) আলট্রাসাউন্ড পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেন তাহলে পরীক্ষার সময়ে শিশুর হৃৎস্পন্দন টের পাওয়া যেতে পারে শিশুর চোখকান তৈরি হচ্ছে এ সপ্তাহে ছোট্টমণির চেহারা তৈরির কাজ অনেকটাই এগিয়ে যাবে মাথার সামনের দিকে দুটো হালকা খাঁজের মতো অংশ তৈরি হচ্ছে যেখান থেকে শিশুর চোখ তৈরি হবে[৫] মাথার দুপাশে ছোটো ছোটো টোল পড়ছে—এখান থেকে তার কান দুটো তৈরি হবে হাতপা গড়ে উঠছেশিশু এসময়ে দ্রুত বেড়ে উঠছে সে খুব তাড়াতাড়ি নানান পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে এ সপ্তাহের শেষ দিকে তার হাতপা তৈরি হওয়া শুরু হয়ে যাবেশরীরের দুপাশে ছোট্ট ফোলা কিছু অংশ দেখা যাবে যা থেকে আগামীতে তার পূর্ণাঙ্গ হাতপা তৈরি হবে গর্ভের ছোট্ট শিশু যাতে সুন্দরভাবে বেড়ে ওঠে সেজন্য আপনার শরীরে নানান আয়োজন চলছে এসময়ে বিভিন্ন ধরনের হরমোন ওঠানামা করছে শরীরে ঘটতে থাকা নানান পরিবর্তন আর হরমোনের ওঠানামা—এসব মিলিয়ে আপনার খাবারের রুচিতে ও ঘ্রাণশক্তিতে পরিবর্তন আসতে পারেপ্রখর ঘ্রাণশক্তিগর্ভধারণের পর আপনার ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়ে উঠতে পারেযেই গন্ধগুলো হয়তো আগে তেমন বুঝতে পারতেন না কিংবা খেয়াল করতেন না সেগুলোও হয়তো এখন নাকে এসে লাগেএটা একটা মজার সুপারপাওয়ারের মতো তবে এটি কখনো কখনো অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেঘ্রাণশক্তি তীব্র মনে হওয়ার সাথে বমি বমি ভাব বেড়ে যেতে পারেগর্ভধারণের আগে কখনোই সমস্যা হতো না এমন খাবার কিংবা জিনিসের গন্ধেও গর্ভাবস্থায় নতুন করে বমি বমি লাগা শুরু হতে পারেঘ্রাণের তীব্রতা কমাতে আপনি যেখানে আছেন সেখানে বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন ঘরের জানালাটা খুলে দিন ফ্যান ছেড়ে দিন যেসব জিনিসের ঘ্রাণ আপনার ভালো লাগে সেগুলো হাতের কাছে রাখুন যেমন লেবুর খোসা আদা অথবা পুদিনাএমন আরও সহজ কিছু ঘরোয়া সমাধান জানতে আমাদের এই লেখাটি পড়ে নিতে পারেনকোনো খাবারের প্রতি তীব্র আগ্রহআজকাল কি আপনার কোনো একটা খাবার খাওয়ার জন্য খুব ইচ্ছা করছে গর্ভাবস্থায় অনেকেরই এমন হয় শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে এমন ঘটে বলে ধারণা করা হয়সমাধানের জন্য খাওয়াদাওয়ার অভ্যাসের ছোটোখাটো কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন একবারে অনেকখানি খাবার না খেয়ে অল্প পরিমাণে কয়েক বারে ভাগ করে খেতে পারেন এতে পেট ভরা থাকে ফলে কিছু খাওয়ার ইচ্ছা কমে আসতে পারেঅপুষ্টিকর ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকবেন এসবের পরিবর্তে কাছাকাছি স্বাদের স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন তবে যদি খুবই অদ্ভুত কিছু যা খাবার নয় এমন কিছু খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হয়—যেমন মাটি কাগজ কিংবা দেয়ালের রঙ—তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডাক্তারি ভাষায় এটিকে পিকা বলা হয় যা আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতার কারণে হতে পারেখাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা নিয়ন্ত্রণের আরও উপায় জানতে এই লেখাটা পড়ুনআয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেটআপনি যদি এখনো আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া শুরু না করে থাকেন তাহলে আজ থেকেই শুরু করুন কেন এই ট্যাবলেট খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ তা আমরা নিচে সংক্ষেপে তুলে ধরছিআমাদের শরীরে রক্ত তৈরির জন্য আয়রন প্রয়োজন হয় অন্য সময়ের তুলনায় গর্ভাবস্থায় আয়রনের চাহিদা অনেকখানি বেড়ে যায়কারণ গর্ভবতী মায়ের শরীরে নতুন রক্ত তৈরি এবং গর্ভের শিশু সুস্থভাবে বেড়ে ওঠার জন্য প্রচুর পরিমাণে আয়রন প্রয়োজন হয়আয়রনের ঘাটতি হলে বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে যেমন গর্ভবতী মায়ের রক্তশূন্যতা শিশু প্রিম্যাচিউর অবস্থায় জন্ম নেওয়া বা সময়ের আগেই জন্ম নেয়া জন্মের সময় শিশুর ওজন কম হওয়াআয়রনের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় আরেকটা পুষ্টি উপাদান খুব গুরুত্বপূর্ণ—ফলিক এসিড এর অভাবে শিশু জন্মগত ত্রুটি নিয়ে পৃথিবীতে আসতে পারে মাথার খুলির হাড় মেরুদণ্ড বা ব্রেইনের গঠনে সমস্যা হতে পারেবাংলাদেশে গর্ভকালীন সময়ের জন্য আয়রন ও ফলিক এসিড একত্রে আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট হিসেবে পাওয়া যায় আপনি বিনামূল্যে সরকারি হাসপাতাল ও স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এই ট্যাবলেট নিতে পারবেনআর কোন কোন জায়গায় এই ট্যাবলেট পাবেন কী নামে পাবেন কীভাবে খাবেন এসব জানতে আমাদের এই লেখাটি পড়ে নিতে পারেনব্যায়ামএসময়ে নিয়মিত ব্যায়াম করুন এটা গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য ও কোমর ব্যথার মতো নানান স্বাস্থ্য সমস্যা সমাধানে সাহায্য করে পাশাপাশি ডেলিভারির সময়ে সিজারের প্রয়োজন হওয়ার সম্ভাবনাও কমতে পারে আগে থেকে ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলে সমস্যা নেই—এখন ব্যায়াম করা শুরু করতে পারেন হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করে সময়ের সাথে সাথে আপনার সহনশীলতা বাড়ানব্যায়াম শুরু করার একটা উপায় হলো প্রথমে ১০ মিনিট স্বাভাবিক গতিতে হাঁটাচলা করুন এরপর ৫ মিনিট দ্রুত গতিতে হাঁটুন তারপর ৫ মিনিট ধীরে হেঁটে ব্যায়াম শেষ করুন এভাবে কয়েকদিন অভ্যাস করে নেওয়ার পর সপ্তাহে ৫ মিনিট করে দ্রুত হাঁটার সময়টা বাড়ানএভাবে একসময় এমন পর্যায়ে নিজেকে নিয়ে আসুন যেন প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট ধরে দ্রুত গতিতে হাঁটতে পারেনঅন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার ক্লান্ত লাগা এমনকি একেবারে পরিশ্রান্ত অনুভব করা স্বাভাবিক গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের অন্যান্য লক্ষণগুলো এ সপ্তাহেও প্রায় একই রকম থাকে— মাথা ব্যথা স্তনে হালকা ব্যথা হওয়া বা চাপ দিলে ব্যথা করা ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি লাগা ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ আসা মুখে অদ্ভুত/ধাতব স্বাদ পাওয়া সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা অনুভব করা পেটে অস্বস্তি বা পেট ফাঁপা হয়েছে এমন মনে হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামী ছোপ ছোপ দাগ পড়া ঘন ও ঝলমলে চুল আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খেতে মনে করিয়ে দিনগর্ভাবস্থায় প্রতিদিন মাকে আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খেতে হয়নিয়মিত ওষুধ খাওয়ার অভ্যাস না থাকলে কখনো কখনো এটা মনে নাও থাকতে পারে এই মনে করিয়ে দেয়ার দায়িত্বটা আপনি নিয়ে নিতে পারেন ঘড়িতে বা ফোনে একটা অ্যালার্ম দিয়ে রাখতে পারেন যাতে ট্যাবলেট খাওয়া মিস না হয়গর্ভকালীন চেকআপের কাগজপত্র সযত্নে রাখুনপুরো গর্ভাবস্থা জুড়ে অনেকগুলো পরীক্ষার রিপোর্ট ও ডাক্তারের প্রেসক্রিপশন জমা হবে গর্ভকালীন চেকআপে আলাদা করে একটি কার্ড বা বই দেওয়া হতে পারে এসব কাগজপত্রে মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য থাকে তাই এগুলো যত্ন করে সংরক্ষণ করা প্রয়োজন এসব একসাথে সুন্দর করে গুছিয়ে রাখার কাজে শিশুর মাকে সাহায্য করতে পারেনস্বাস্থ্যকর খাবার কিনে রাখুনআপনার সঙ্গীর হয়তো আজকাল হঠাৎ করেই কোনো একটা খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা জেগে উঠতে পারে এসময়ে স্বাস্থ্যকর অপশনগুলো হাতের কাছে থাকলে অপুষ্টি বা অতিরিক্ত ওজন বাড়ার সম্ভাবনা কমবেকোন ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার কিনে রাখলে ভালো হবে সেটা আপনার সঙ্গীর কাছ থেকে শুনে নিন যেমন মিষ্টি কিছু খাওয়ার ইচ্ছে হলে কয়েক ধরনের মিষ্টি ফল কিনে রাখুন আপনার সুবিধামতো সময়ে টুকরো করে কেটে কেটে সঙ্গীর হাতের নাগালে রেখে দিতে পারেনরান্নার কাজে সাহায্য করুনএসময়ে আপনার সঙ্গীর ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে বেড়ে যেতে পারে ফলে অনেকসময় রান্না করতে গেলে বিভিন্ন খাবার ও মসলার গন্ধে তার অস্বস্তি হতে পারে বমি আসতে পারে রান্নার সময়ে আপনি ঘরের জানালা খুলে দিন এবং ফ্যান ছেড়ে দিন এটা অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করতে পারেতাকে রান্নার কাজ থেকে কিছুদিনের জন্য বিরতি নিতে বলতে পারেন আপনি নিজে রান্নার দায়িত্ব নিতে পারেন অথবা অন্য কাউকে অনুরোধ করতে পারেন লাল চাল ও লাল আটা ব্যবহার করুন সাদা চাল ও সাদা আটা হঠাৎ করে রক্তে সুগারের পরিমাণ অনেক বাড়িয়ে দেয় যা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে এর পরিবর্তে লাল চাল ও লাল আটা দিয়ে খাবার তৈরি করুন দিনে ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করুন বমিভাব থাকলেও অল্প করে চুমুক দিয়ে দিয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি করার চেষ্টা করবেন এটা গর্ভের শিশুর বেড়ে ওঠায় সাহায্য করবে এবং শিশু যে পানিতে বড় হয় তা তৈরিতে সহায়তা করবে প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান মা ও শিশু সুস্থ থাকার জন্য পুরো গর্ভাবস্থা জুড়ে আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া প্রয়োজনতাই আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান শিশু গর্ভে খুব দ্রুত বেড়ে চলেছে সে এখন লম্বায় প্রায় ১০ মিলিমিটার অর্থাৎ ১ সেন্টিমিটারের কাছাকাছি—এক দানা মুড়ির সমান গত সপ্তাহের তুলনায় শরীর আরও গুটিয়ে এখন সে গর্ভে ইংরেজি C এর মতো অবস্থান নিয়েছে শিশুর মাথা খুব দ্রুত বেড়ে উঠছে শিশুর ব্রেইন এসময়ে শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় দ্রুত বিকশিত হচ্ছে একারণে তার মাথা এখন শরীরের অন্যান্য অঙ্গের তুলনায় বড় শিশুর কপালটাও বেশ বড় শিশুর চোখের লেন্স তৈরি হচ্ছে ক্যামেরায় যেমন লেন্স থাকে আমাদের চোখেও লেন্স আছে—যা আমাদেরকে স্পষ্ট দেখতে সাহায্য করে এ সপ্তাহে ছোট্ট শিশুর চোখের ভেতরে সেই লেন্স তৈরি হচ্ছেকানের ভেতরের অংশ তৈরি হতে শুরু করেছেযেখানে শিশুর নাক তৈরি হবে সেখানে ছোট্ট গর্ত হয়েছে সবমিলিয়ে শিশুর মুখমণ্ডল তৈরির কাজ অনেকদূর এগিয়ে যাচ্ছে ছোট্টমণির হাতপা বড় হচ্ছে এসময়ে হাতপায়ে নরম কচকচে হাড় বা তরুণাস্থি তৈরি শুরু হয়েছেএগুলো থেকেই পরবর্তীতে শিশুর হাতপায়ের শক্ত হাড়গুলো তৈরি হবে শিশুর হাতগুলো এখন লম্বা হচ্ছে তবে হাতের প্রান্তগুলো এখন চ্যাপ্টা—দেখতে কিছুটা বৈঠার মতো আপনার কি আজকাল ঘন ঘন পানির পিপাসা লাগছে বেশ আবেগপ্রবণ লাগছে বা মনে হচ্ছে সবকিছুর ওপর থেকে কেমন নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাচ্ছে আপনি একা নন গর্ভকালীন হরমোনের ওঠানামা আর শরীরে ঘটতে থাকা নানান পরিবর্তনের কারণে অনেকেরই এই সময়টাতে এমন লাগেশরীরে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াগর্ভকালে আপনার শরীরে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যায় গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে রক্তের পরিমাণ একসময়ে প্রায় ৪০ থেকে ৫০ শতাংশ বাড়েএই বাড়তি রক্ত গর্ভে বেড়ে উঠতে থাকা শিশুর জন্য পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি আপনার জরায়ুতে পৌঁছে দিবেপর্যাপ্ত পানি পানশরীরে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় এখন বেশি পিপাসা লাগতে পারে খেয়াল করে সারাদিনে ৮–১২ গ্লাস (২–৩ লিটার) পানি পান করার চেষ্টা করবেনপানি একদিকে যেমন আপনার হজমে ও কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করবে অন্যদিকে গর্ভে শিশুকে ঘিরে যে পানির মতো তরল থাকে সেটা তৈরিতেও সহায়তা করবেডাক্তারি ভাষায় এটাকে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড বলে যা শিশুকে গর্ভের ভেতরে নানানভাবে সুরক্ষিত রাখেবমিভাব থাকলে ছোটো চুমুকে অল্প অল্প করে বারবার পানি খাবেনলাল চাল ও লাল আটাখেয়াল করুন বাসায় কোন চাল আর আটা ব্যবহার হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা সাদা চাল ও সাদা আটা ব্যবহার করি তবে সেগুলোর তুলনায় লাল চাল ও লাল আটাতে পুষ্টিমান ও ফাইবার অনেক বেশি পরিমাণে থাকে লাল চালকে অনেকে ঢেঁকিছাঁটা চাল কুড়াকাটা চাল বা ব্রাউন রাইস নামে চেনেন এগুলো খেলে রক্তে সুগারের পরিমাণ ধীরে ধীরে বাড়ে যা গর্ভের শিশুর জন্য ভালোঅন্যদিকে সাদা চাল ও সাদা আটা খাওয়ার পর রক্তে সুগারের পরিমাণ হুট করে অনেক বেড়ে যায় যা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে তাই সাদা চাল ও সাদা আটার বদলে লাল চাল ও লাল আটা ব্যবহার করা শুরু করুনএই পরিবর্তনটা ধীরে ধীরে করুন প্রথমে হয়তো কয়েকদিন সাদা আটার সাথে লাল আটা মিশিয়ে রুটি বানালেন কিংবা এক বেলা সাদা চালের ভাত আর অন্য বেলায় লাল চালের ভাত মিশিয়ে খেলেন লাল চাল ও লাল আটা খাওয়ার সাথে সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন নাহলে পেটে অস্বস্তি হতে পারেঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইংআপনার এই খুশি আবার এই মন খারাপ লাগতে পারে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা কিংবা কান্না করে ফেলার প্রবণতাও দেখা দিতে পারে মনে হতে পারে যেন সবকিছুর ওপর থেকে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে যাচ্ছে গর্ভাবস্থায় এই অনুভূতিগুলো স্বাভাবিকতবে আপনার যদি প্রতিনিয়তই মন খারাপ লাগে অথবা দুশ্চিন্তা থেকে স্বাভাবিক জীবনযাপনে ছন্দপতন হয় তাহলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন প্রয়োজনে আপনার সঙ্গী পরিবারের সদস্য ও সহকর্মীদের কাছে সাহায্য চাইতে দ্বিধা বোধ করবেন নাগর্ভের আকারঃগর্ভের ভেতরে শিশু এখন খুব দ্রুত বেড়ে উঠছে বাড়ন্ত শিশুকে ধারণ করার জন্য আপনার জরায়ুও ক্রমাগত বড় হচ্ছে এ সপ্তাহে আপনার জরায়ুর আকার বেড়ে একটা মাঝারি আকারের কমলার সমান হয়ে দাঁড়িয়েছেআপনি হয়তো খেয়াল করছেন যে পায়জামার ফিতা একটু ঢিলা করে বাঁধতে হচ্ছে তবে এখনই হয়তো বাইরে থেকে দেখে বোঝা যাবে না যে আপনি মা হতে চলেছেন সেজন্য ১২তম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হতে পারেতবে আপনার আগে সন্তান হয়ে থাকলে তার আগেই বোঝা যেতে পারে কারণ তখন পেট ও জরায়ুর পেশিগুলো একটু ঢিলে হয়ে আসে আগের মত টানটান থাকে নাঅন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহেও ক্লান্তি বমি বমি লাগা ও আবেগপ্রবণ অনুভব করা—সবমিলিয়ে সময়টা বেশ চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে— মাথা ব্যথা সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা অনুভব করা মুখে মেছতার মতো বাদামী ছোপ ছোপ দাগ পড়া ঘন ও ঝলমলে চুল স্তনে হালকা ব্যথা হওয়া বা চাপ দিলে ব্যথা করা খাবারের অভ্যাসে লক্ষণীয় পরিবর্তন আসা হঠাৎ প্রিয় কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা দিতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু খাবারের গন্ধে বমি বমিও লাগতে পারেতীব্র ঘ্রাণশক্তি মুখে অদ্ভুত/ধাতব স্বাদ পাওয়া পেটে অস্বস্তি বা পেট ফাঁপা হয়েছে এমন মনে হওয়া পানি ভরে হাতের নাগালে রেখে দিনএসময়ে গর্ভবতী মায়ের দিনে ২ থেকে ৩ লিটার পানি খাওয়া প্রয়োজন এই কাজটা আপনি একটু সহজ করে দিতে পারেন সকালে আর সন্ধ্যায় একটা বোতলে পানি ভরে তার হাতের নাগালে রেখে দিন তাহলে ভুলে যাওয়ার আশঙ্কা কমবে সাথে রাখুন একটা গ্লাস বা মগ সম্ভব হলে সাথে গ্লাসের ঢাকনাও রেখে দিতে পারেনলাল চাল ও লাল আটা দিয়ে তৈরি খাবার খাওয়া শুরু করুনলাল চাল ও লাল আটাতে অনেক পুষ্টিগুণ থাকে যা মা ও গর্ভের শিশুর পাশাপাশি আপনাদের পুরো পরিবারের সুস্থতা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে তবে একজনের জন্য বাসায় লাল চাল বা লাল আটা দিয়ে খাবার তৈরি করা কষ্টসাধ্য তাই পরিবারের অন্য সদস্যদেরকেও চেষ্টা করে দেখতে অনুরোধ করুন তাহলে আলাদা করে রান্না করার ঝামেলা থাকবে না আবার সবার স্বাস্থ্যেরই উপকার হবেআপনি যদি বাজার করেন তাহলে সাদা চাল ও আটার পাশাপাশি লাল চাল ও লাল আটাও কিনে আনুন লাল চালকে অনেকে ঢেঁকিছাঁটা চাল কুড়াকাটা চাল বা ব্রাউন রাইস নামে চেনেনসঙ্গীর সাথে কথা বলে খাবার তালিকায় এসবের পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়ানোর ব্যবস্থা করুন স্বাদের সাথে অভ্যস্ত হতে হয়তো খানিকটা সময় লাগবে এজন্য প্রথমে কয়েকদিন সাদা আটার সাথে লাল আটা মিশিয়ে রুটি তৈরি করে খেতে পারেন একবেলা লাল চালের ভাত আরেক বেলা সাদা চালের ভাত—এভাবেও চেষ্টা করে দেখতে পারেনআস্তে আস্তে পরিমাণ বাড়াবেন ও পর্যাপ্ত পানি পান করবেন নাহলে পেটে অস্বস্তি হতে পারেমুড সুইং হলে মানসিক সাপোর্ট দিনআপনার সঙ্গীর এখন বেশি আবেগপ্রবণ লাগতে পারে ছোটোখাটো বিষয়ে তার মন খারাপ হতে পারে এমনকি কেঁদে ফেলতে পারে এসময়ে আপনার সর্বোচ্চ চেষ্টা দিয়ে তাকে মানসিক সাপোর্ট দিন আবেগ নিয়ে কথা বলার অভ্যাস না থাকলেও সঙ্গীর পাশে বসে তার মনের অবস্থা শুনুন নিজে থেকে দুইএকটা প্রশ্ন করুন এ নিয়ে এই কয়েকটা সপ্তাহে তার ইচ্ছাকে যথাসম্ভব প্রাধান্য দিন এবং ধৈর্য ধরুনকথা কাটাকাটি হলে আপনি মাথা ঠাণ্ডা রাখুনআবেগপ্রবণ অবস্থায় সঙ্গী আপনাকে কষ্টদায়ক কথাবার্তা বলতে পারে বা সামান্য বিষয়ে কথা কাটাকাটি হতে পারে এসময়ে আপনার মাথা ঠাণ্ডা রাখা সহজ না হলেও শিশুর মা আসলে কী বলতে চাইছেন সেদিকে মনোযোগ দিতে চেষ্টা করবেন আপনার কোনো ভুল হয়েছে বুঝতে পারলে সেটা ঠিক করার উদ্যোগ নিবেন আর গায়ে লাগার মতো কথাগুলো পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করবেন শিশুর বুদ্ধিবিকাশে খাবার তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ রাখুনভবিষ্যতের ছোট্টমণিকে মেধার দিক দিয়ে এগিয়ে রাখার সম্ভাবনা বাড়াতে সপ্তাহে অন্তত ২৮০ গ্রাম মাছ খাবেন এর মধ্যে অর্ধেক খাবেন ইলিশ পুঁটি ও চাপিলার মতো তৈলাক্ত মাছবমিভাবের জন্য আদা খেতে পারেনবমিভাব হলে গরম পানিতে একটু আদা কুচি খেয়ে দেখতে পারেন এতে অনেকের বমিভাব কমে যায়মনে করে আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাবেনআপনার শিশু এখন দ্রুত বেড়ে উঠছে চোখনাককান ও ব্রেইন তৈরি হচ্ছে এসব যাতে সঠিকভাবে তৈরি হতে পারে সেজন্য আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও অবশ্যই মনে করে প্রতিদিন আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেনডাক্তারের কাছে চেকআপ করিয়ে ফেলুনকী করলে মা ও শিশু সুস্থ থাকবে কোন ওষুধ খেতে হবে কোন পরীক্ষা করতে হবে—এসব জানার জন্য গর্ভধারণের পর পরই দ্রুত ডাক্তার দেখানো প্রয়োজন এখনো করা না হয়ে থাকলে এ সপ্তাহেই ডাক্তার দেখান কোন ডাক্তার দেখালে ভালো হবে সে ব্যাপারে আপনার সঙ্গীর সাহায্য নিতে পারেন এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু অনেক দ্রুত বেড়ে উঠছে সে এখন প্রায় ১৬ মিলিমিটার লম্বা—একটি মিষ্টি কুমড়ার বিচির সমানশিশুর কান দুটো তৈরি হচ্ছেএ সপ্তাহে ছোট্ট শিশুর কানের বাইরের অংশ তৈরি হওয়া শুরু হয়ে গেছেচোখ নাক ও ঠোঁটের আকৃতি আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে আপনার শিশুর মুখমণ্ডল তৈরি হওয়ার এই প্রক্রিয়া চলতে থাকবে পুরো সপ্তাহ জুড়েইশিশুর আঙ্গুলগুলো তৈরি হচ্ছেশিশুর ছোট্ট ছোট্ট হাতপায়ে আঙুলের খাঁজ তৈরি হতে শুরু করেছে এই খাঁজ থেকে হাতপায়ের আঙ্গুল তৈরি হবে এখন শিশুর পায়ের চেয়ে হাতগুলো বেশি লম্বা কারণ এই সময়ে শরীরের নিচের অংশের চেয়ে ওপরের অংশ তাড়াতাড়ি বাড়তে থাকে পায়ের পাতা গোড়ালি হাঁটু ও আঙুলগুলো স্পষ্টভাবে বোঝা যেতে আরও কিছুদিন সময় লাগবেশরীরের ভেতরের অঙ্গপ্রত্যঙ্গ গড়ে উঠছেশরীরের বাইরের অংশের সাথে তাল মিলিয়ে শরীরের ভেতরের নানান অঙ্গ–প্রত্যঙ্গও বিকশিত হতে শুরু করেছে এর মধ্যেই ফুসফুস তৈরির কাজ এগিয়ে যাচ্ছে পেটের ভেতরের পরিপাকতন্ত্র লিভার ও মূত্রথলিসহ আরও বেশ কিছু অঙ্গ বেড়ে উঠছে আগের সপ্তাহের মতো এ সপ্তাহেও আপনার শিশুর ব্রেইন বিকশিত হচ্ছে এবং ব্রেইনের বিভিন্ন অংশগুলো বেশ স্পষ্ট হতে শুরু করে এ সপ্তাহে আপনার গর্ভধারণের দুই মাস পূর্ণ হবে বাইরে থেকে দেখলে হয়ত কেউ এখনো বুঝতে পারছে না যে আপনি মা হতে চলেছেন কাছের মানুষগুলোকে এই সুখবর না দিয়ে থাকলে কখন কীভাবে তাদেরকে জানাবেন সেটা চিন্তা করতে পারেনএ বিষয়ে শিশুর বাবার সাথেও আলাপ করতে পারেন অনেকে প্রথম তিন মাস পার হওয়ার পর খবরটা জানান কারণ তখন মিসক্যারেজ বা গর্ভপাতের সম্ভাবনা অনেকখানি কমে আসেনিয়মিত মাছ খাওয়ামাছে যে পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় তা গর্ভের শিশুর ব্রেইন ও চোখের রেটিনা গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে গর্ভাবস্থায় মা নিয়মিত মাছ খেলে শিশুর ব্রেইন ভালো হয় আইকিউ বাড়ে কথাবার্তায় পটু হয় ও সবমিলিয়ে বুদ্ধিবৃত্তি নানানভাবে বিকশিত হয় বলে গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে তাই গর্ভাবস্থায় খাবার তালিকায় পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ রাখার চেষ্টা করবেনকতটুকু মাছ খাবেন সপ্তাহে অন্তত ২৮০ গ্রাম মাছ খাওয়ার চেষ্টা করবেন এর মধ্যে ১৪০ গ্রাম পরিমাণ তৈলাক্ত মাছ খাবেন যেমন ইলিশ পুঁটি ও চাপিলাখাওয়ার সময়ে ভেজে খাওয়ার পরিবর্তে ভাপে সেদ্ধ করে কম তেল দিয়ে রান্না করে অথবা সবজি মিশিয়ে তরকারির মতো খেতে পারেন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়েও এভাবে মাছ খাওয়া চালিয়ে যাবেনবমিভাব ও বমিএ সময়ে আপনার বমিভাব ও বমি হতে পারে শরীরে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে এই সমস্যাগুলো দেখা দেয় বলে ধারণা করা হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই প্রথম তিন মাস পর বমিভাব ও বমি কমে আসেআপনার এই সমস্যা হলে কিছু ঘরোয়া উপায়ে সমাধান করার চেষ্টা করতে পারেন যেমন আদা খেলে অনেকের বমিভাব ও বমি কমে আসে কুসুম গরম পানিতে আদা কুচি দিয়ে খেতে পারেন বা খানিকটা কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেনকিছুক্ষণ পর পর অল্প পরিমাণে ছোটো ছোটো চুমুক দিয়ে পানি পান করবেন তাতে বমিভাব কমতে পারে দিনে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান নিশ্চিত করবেন নাহলে পানিশূন্যতার কারণে বমিভাব বেড়ে যেতে পারেঘরে বসেই করতে পারবেন এমন আরও কিছু সহজ সমাধান জানতে আমাদের গর্ভাবস্থায় বমি বা মর্নিং সিকনেস লেখাটি পড়ুনক্লান্তিগর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে আপনার অনেক ক্লান্ত লাগতে পারেসকালবেলা বিছানা ছেড়ে উঠতেই অনেক কষ্ট লাগতে পারে এটা স্বাভাবিক যদিও এসময়ে গর্ভের শিশু খুব ছোটো থাকে তাকে সঠিকভাবে বড় করার জন্য আপনার শরীরে নানান আয়োজন চলতে থাকে ফলে আপনার খুব ক্লান্ত লাগতে পারে প্রথম তিন মাস পর এই ক্লান্তিভাব ধীরে ধীরে কমে আসেতবে শেষ তিন মাসে আবার ক্লান্ত লাগতে পারেক্লান্তি কমাতে রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম নিশ্চিত করুন পারলে রাতে একটু আগে আগে ঘুমাতে যেতে পারেন দিনের বেলায় ক্লান্ত লাগলে প্রয়োজনমত বিশ্রাম নিনক্লান্তি কমানোর আরও কিছু সহজ ঘরোয়া সমাধান পেতে আমাদের গর্ভাবস্থায় ক্লান্তি লেখাটি পড়তে পারেনঘন ঘন প্রস্রাবআপনার শিশু বড় হওয়ার সাথে সাথে আপনার জরায়ু আকারে বড় হচ্ছে এখন আপনার জরায়ু বেড়ে প্রায় একটা মাঝারি আকারের কমলার সমান হয়ে গেছে জরায়ুর খুব কাছেই মুত্রথলি থাকে যেখানে প্রস্রাব জমা হয় বাড়তে থাকা জরায়ু গিয়ে মুত্রথলিতে চাপ দেয় ফলে আপনার বারবার প্রস্রাবের বেগ আসতে পারেএ কারণে রাতে ঘুমাতে অসুবিধা হলে ঘুমানোর কয়েক ঘন্টা আগে থেকে কম পানি পান করুনতবে শরীরে যেন পানির ঘাটতি না হয় এজন্য দিনের বেলায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করে নেবেন যদি প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া করে আপনার প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হয়ে থাকতে পারে যার জন্য ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা করা প্রয়োজনপ্রস্রাবের রাস্তার ইনফেকশনের আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ এবং ঘন ঘন প্রস্রাবের ঘরোয়া সমাধান জানতে আমাদের গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাব লেখাটি পড়ুনগর্ভকালীন চেকআপবিগত সপ্তাহগুলোতে গর্ভকালীন চেকআপ না করিয়ে থাকলে এ সপ্তাহেই গর্ভকালীন চেকআপ করাতে যান যত দ্রুত গর্ভকালীন সেবা নেওয়া শুরু করবেন তত দ্রুত আপনার এবং গর্ভের শিশুর জন্য সঠিক পদক্ষেপগুলো নিতে পারবেনগর্ভকালীন চেকআপের জন্য নিকটস্থ সরকারি মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সদর হাসপাতাল মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র কমিউনিটি ক্লিনিক এমনকি স্যাটেলাইট ক্লিনিকেও যোগাযোগ করতে পারেনঅন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— কোষ্ঠকাঠিন্য পেটে অস্বস্তি বা পেট ফাঁপা হয়েছে এমন মনে হওয়া খাবারের অভ্যাসে লক্ষণীয় পরিবর্তন আসা হঠাৎ কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা দিতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু খাবারের গন্ধে বমি বমিও লাগতে পারেমাথা ব্যথা মুখে অদ্ভুত অথবা ধাতব স্বাদ পাওয়া তীব্র ঘ্রাণশক্তি সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারেপিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা অনুভব করা মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়া স্তনে হালকা ব্যথা হওয়া অথবা চাপ দিলে ব্যথা করা ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বেশি করে মাছ কিনুনমাছ গর্ভের শিশুর ব্রেইনবুদ্ধির বিকাশের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণমাছে থাকা পুষ্টি উপাদান শিশুর মেধা বাড়ায় বলে গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছেতাই শিশুর মায়ের পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ খাওয়া নিশ্চিত করতে হবেআপনি যদি বাজার করার দায়িত্বে থাকেন তাহলে নিয়মিত মাছ কিনতে ভুলবেন না এমন পরিমাণে মাছ কিনবেন যেন শিশুর মায়ের সপ্তাহে অন্তত ২৮০ গ্রামের মতো মাছ খাওয়া হয় কেনার সময়ে এক ভাগ সাধারণ মাছ আরেকভাগ ইলিশ চাপিলা অথবা পুঁটির মতো তৈলাক্ত মাছ কেনার চেষ্টা করবেন পরিবারের অন্য কেউ বাজার করলে তার সাথে এ নিয়ে আলাপ করবেনবমিভাব কমাতে ছোট্ট সাহায্য করুনআপনার সঙ্গীর সকালে ঘুম থেকে ওঠার পর পরই খালি পেটে কোনো কাজ করলে বমি বমি ভাব হওয়ার সমস্যা থাকতে পারে তার জন্য একটি ছোট্ট সাহায্য করতে পারেন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বিছানার পাশে তার জন্য একটি ক্র্যাকার বিস্কুটের প্যাকেট রেখে ঘুমানসকালে উঠে কিছু খেয়ে নিলে তার বমি বমি ভাব কমে যেতে পারেকিছু কাজ ভাগাভাগি করে নিনএ সময়ে গর্ভবতী মায়ের অনেক ক্লান্ত লাগতে পারেআগে যেসব কাজ সে অনায়াসে করতে পারতেন এখন সেগুলোতে দ্রুত ক্লান্তি চলে আসতে পারে তার হাতের কিছু কাজ আপনি নিয়ে নিতে পারেন যাতে সে বিশ্রাম করতে পারে এবং ক্লান্তি কিছুটা কমেপরিবারের অন্য সদস্যদেরকেও তাকে সহায়তা করতে বলতে পারেন তবে তাদেরকে এখনো গর্ভাবস্থার কথা না জানিয়ে থাকলে সাহায্য চাওয়া কিছুটা কঠিন হতে পারেঘন ঘন প্রস্রাবের বিপদচিহ্নগুলো জেনে রাখুনএসময়ে বাড়ন্ত শিশুর চাপে সঙ্গীর বারবার প্রস্রাবের বেগ আসতে পারে তবে কখনো কখনো ইউরিন ইনফেকশনের কারণেও ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে সময়মতো এর চিকিৎসা না করলে কিডনির ইনফেকশন পর্যন্ত হতে পারে এতে মা ও গর্ভের শিশুর বিভিন্ন মারাত্মক জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায়তাই ঘন ঘন প্রস্রাবের বিপদচিহ্নগুলো জেনে রাখুন যেমন প্রস্রাবের রাস্তায় জ্বালাপোড়া অস্বাভাবিক গন্ধযুক্ত অথবা ঘোলাটে প্রস্রাব হওয়া শরীরে কাঁপুনি হওয়া জ্বর আসা বা গা গরম লাগা সঙ্গীর এমন কোনো লক্ষণ দেখা দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যানবিপদচিহ্ন ও করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে এই লেখাটি পড়ুনদুর্গন্ধ এড়াতে সহজ টিপস মাথায় রাখুনশিশুর মায়ের বমির গন্ধে যদি আপনারও বমির উদ্রেক হয় তাহলে নাকের নিচে আপনার পছন্দের কোনো সুগন্ধি ব্যবহার করুন যেমন আফটারশেইভ সুন্দর গন্ধের কোনো লিপ বাম বা ভ্যাসলিন পেপারমিন্ট অয়েল বা এমন কোনো এসেনশিয়াল অয়েল হাতের কাছে থাকলে সেটা ব্যবহার করতে পারেনঅনলাইনে নোজ প্লাগ বা নোজ ক্লিপ পাওয়া যায় দাম ১০০–৩০০ টাকা গন্ধ এড়াতে সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন সবজি ও ফলমূল খাওয়া বাড়িয়ে দিনগর্ভের শিশুর সুস্থ বিকাশের জন্য প্রয়োজনীয় ভিটামিন আর মিনারেলের জোগান দিতে প্রতিবেলায় খাবারে কিছু সবজি ও ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন সব মিলিয়ে প্রতিদিন অন্তত ৪০০ গ্রাম পরিমাণ শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করবেননিয়মিত ব্যায়াম করা চালিয়ে যাননতুন করে ব্যায়াম করা শুরু করলে একটু চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে পরিবারের অন্য কোনো সদস্য অথবা বন্ধুদের সাথে একত্রে ব্যায়াম করতে পারেন এতে সবাই বিষয়টা উপভোগ করতে পারবেন স্বাস্থ্যেরও উপকার হবেআয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানআপনার শিশু এ সপ্তাহেও খুব দ্রুত বেড়ে উঠছে ব্রেইন ও বিভিন্ন অঙ্গ দ্রুত বিকশিত হচ্ছে এসব যাতে সঠিকভাবে তৈরি হতে পারে সেজন্য আগের সপ্তাহগুলোর মতো এই সপ্তাহেও অবশ্যই মনে করে প্রতিদিন আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন আপনার গর্ভের ছোট্ট শিশু এখন প্রায় ২২ মিলিমিটার লম্বা—প্রায় একটি আঙ্গুরের সমানচোখের বিভিন্ন অংশ তৈরি হচ্ছেএ সপ্তাহে শিশুর চোখের পাতাগুলো তৈরি হয়ে যাবেনির্দিষ্ট অংশ কিছুটা রঙিন হতে শুরু করেছেসাথে সাথে চোখ জোড়া একটু একটু করে বড় হচ্ছে চোখের ভেতরের অংশগুলো আরও বিকশিত হচ্ছেশিশুর জিভ ও ঠোঁট তৈরি হচ্ছেআপনার শিশুর মুখমণ্ডল ধীরে ধীরে আরও স্পষ্ট হয়ে উঠছে ওপরের ঠোঁট তৈরি হতে শুরু করেছেমুখের ভেতরে জিভ ও জিভে ছোট্ট ছোট্ট টেস্ট বাড বা স্বাদ কোরকও তৈরি হচ্ছেস্বাদ কোরকের সাহায্যে পরবর্তীতে সে খাবারের স্বাদ বুঝতে পারবেহাতপায়ের আঙুল আলাদা হতে শুরু করেছেহাত–পায়ের শেষ প্রান্তে খাঁজগুলো জোড়া লাগানো অবস্থা থেকে আলাদা হতে শুরু করেছেতবে এখনো আঙুলগুলো পুরোপুরি তৈরি হয়নি হাতপায়ের মাংসপেশি তৈরি হতে শুরু করেছে এই সপ্তাহেশরীরের বিভিন্ন অংশের হাড় তৈরি হওয়ার কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে এর মধ্যেশরীরের জনন অঙ্গ গড়ে উঠছেশরীরের ভেতরে ছোট্ট শিশুর হার্ট ব্রেইন ফুসফুস কিডনি ও পরিপাকতন্ত্র দিন দিন আরও বিকশিত হচ্ছে এ সপ্তাহে আপনার শিশুর স্তনের বোঁটা তৈরি হয়ে যাবে পায়ুপথ তৈরি হবেশিশুর জনন অঙ্গ তৈরির কাজ অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে তবে সে ছেলে না কি মেয়ে সেটি আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে বোঝার জন্য আরও বেশ কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে আপনার গত কয়েক সপ্তাহ ধরে আপনার শরীরে গর্ভকালীন সময়ের একটি বিশেষ হরমোনের মাত্রা বেশ দ্রুত গতিতে বেড়ে চলছে এই হরমোনটির নাম হলো human chorionic gonadotropin বা সংক্ষেপে এইচসিজি (hCG) এই সপ্তাহে আপনার শরীরে এই হরমোনটির সর্বোচ্চ পরিমাণে থাকবেপাশাপাশি গর্ভকালীন সময়ের অন্যান্য হরমোনগুলো (যেমন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন) পরিমাণে বেশি থাকে এসব হরমোন আপনার গর্ভে রক্ত সরবরাহ বাড়িয়ে দেয় যা আপনার গর্ভের শিশুর বেড়ে ওঠায় সাহায্য করবেস্তনে পরিবর্তনশিশু জন্মের পরে মায়ের বুকের দুধ থেকে সব ধরনের পুষ্টি পায় এই কাজের জন্য স্তন গর্ভাবস্থা থেকেই প্রস্তুতি নিতে থাকে প্রথম ৩ মাসে স্তনের আকার বাড়তে থাকে সাথে সাথে ব্রা এর কাপ সাইজও বেড়ে যায় এই মাসে আপনার ব্রা এর মাপ পুরো এক কাপ সাইজ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারেসাথে স্তনে ব্যথাও হতে পারেএজন্য সঠিক মাপের আরামদায়ক ও ভালো সাপোর্ট দেয় এমন ব্রা বেছে নিন গর্ভাবস্থার জন্য বিশেষ ম্যাটারনিটি ব্রা বেছে নিতে পারেন প্রয়োজনে ব্যথার জন্য প্যারাসিটামল খেতে পারেনসঠিক সাইজের আরামদায়ক ব্রা বেছে নিতে আমাদের এই গাইডটি দেখতে পারেনসাদা স্রাবগর্ভাবস্থায় তুলনামূলকভাবে বেশি সাদা স্রাব হওয়া স্বাভাবিক এতে ভয় পাবেন না সাদা স্রাব হলে স্বাস্থ্য ভেঙে পড়ে না দুর্বল লাগে না শরীর থেকে পুষ্টিও বেরিয়ে যায় না এটা বন্ধ করার কোনো প্রয়োজন নেইতবে কিছু ক্ষেত্রে সাদা স্রাব ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে যেমন অস্বাভাবিক গন্ধ কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব যাওয়া যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হওয়া কিংবা চুলকানো এসব লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেনগর্ভাবস্থায় সাদা স্রাব নিয়ে বিস্তারিত জানতে এই লেখাটি পড়তে পারেনস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকসযখন আপনার ক্লান্ত লাগবে মন তেমন ভালো লাগবে না তখন হাতের কাছে থাকা বিস্কুটচানাচুর খেয়ে ফেলাটাই সহজ মনে হতে পারে কিন্তু এগুলো আপনার ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর তাই সবসময় চেষ্টা করুন স্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস বেছে নিতে বেছে নিতে পারেন একটা আপেল একটা সেদ্ধ ডিম বা কয়েক টুকরা গাজরদ্বিতীয় চেকআপআপনার দ্বিতীয় গর্ভকালীন চেকআপের সময় হয়ে এসেছে সেটার জন্য প্রস্তুতি নিন কোনো প্রশ্ন মাথায় আসলে তা লিখে রাখুন এতে তাড়াহুড়ায় থাকলেও প্রশ্ন ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে নাসবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত এরপর ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার তারপর প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবেকোনো কারণে যদি এখনো প্রথম চেকআপ না করিয়ে থাকেন তাহলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব সেটার ব্যবস্থা করুনঅন্যান্য লক্ষণএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্লান্ত লাগা বমি বমি ভাব বা বমি একে অনেকসময় মর্নিং সিকনেস বলে তবে এই বমি ভাব দিনের যেকোনো সময়েই হতে পারে পেটে অস্বস্তি বা পেট ফাঁপা হয়েছে এমন মনে হওয়া মাথা ব্যথা তীব্র ঘ্রাণশক্তি খাবারের অভ্যাসে লক্ষণীয় পরিবর্তন আসা হঠাৎ কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা দিতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু খাবারের গন্ধে বমি বমিও লাগতে পারে মুখে অদ্ভুত অথবা ধাতব স্বাদ পাওয়া ঘন ঘন মন মেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা অনুভব করা মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারেলক্ষণগুলোর কারণে এখন বেশ অস্বস্তি হলেও আগামী সপ্তাহগুলোতে আপনার একটু একটু করে ভালো লাগা শুরু হতে পারে পরের চেকআপের জন্য প্রস্তুত হোনএখন শিশুর মায়ের দ্বিতীয় চেকআপের সময় হয়ে এসেছে অ্যাপয়েন্টমেন্টের শিডিউল দেখে তাকে প্রস্তুতি নিতে সাহায্য করুন যদি এখনো প্রথম চেকআপ করানো না হয়ে থাকে তাহলে যত দ্রুত সম্ভব অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে সঙ্গীর চেকআপ শুরু করার ব্যবস্থা করুনগর্ভাবস্থায় কোন কোন সময়ে চেকআপে যেতে হবে তা জানতে এই লেখাটি পড়তে পারেনডাক্তারের জন্য প্রশ্নের লিস্ট তৈরি করে ফেলুনগর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য ও প্রেগন্যান্সি সংক্রান্ত যেকোনো প্রশ্ন মাথায় আসলে সেটি লিখে রাখুন যেন চেকআপের সময়ে ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করতে পারেন আপনার ও শিশুর মায়ের প্রশ্নগুলো মিলিয়ে একটা লিস্ট বানিয়ে ফেলুনমাবাবা অথবা পরিবারের অন্য কারো কাছ থেকে আসা কোনো দরকারি প্রশ্নও লিখে রাখতে পারেন এতে চেকআপের সময়ে কোনো প্রয়োজনীয় বিষয়ে কথা বলতে ভুলে যাবেন নাসাদা স্রাব বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিকসঙ্গী আপনাকে সাদা স্রাব বেড়ে যাওয়ার কথা জানালে কিংবা আপনি তার এমন কোনো পরিবর্তন খেয়াল করলে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাবেন না গর্ভাবস্থায় এমন হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা এতে চিন্তার কিছু নেইএকসাথে ব্যায়াম করুনআপনার সঙ্গীর জন্য এসময়ে ব্যায়াম করাটা বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্আপনারা দুইজন একসাথে ব্যায়াম করলে ব্যায়ামের প্রতি সঙ্গীর আগ্রহ বাড়তে পারে দুজনেই হয়তো সময়টা বেশি উপভোগ করবেন সাথে স্বাস্থ্যেরও উপকার হবেবমিভাব উদ্রেক করে এমন জিনিস কিনবেন নাযেসব খাবারে শিশুর মায়ের বমির উদ্রেক হয় সেগুলো বাসায় আনা বাদ দিতে পারেন আপনার হয়তো সেসব খাবার খেতে সমস্যা হয় না বেশ পছন্দ করেই খান তারপরও এই সময়টায় সঙ্গীর কথা মাথায় রেখে এগুলো এড়িয়ে চলুনআগে থেকে বাসায় এমন খাবার থাকলে সেগুলো অন্য কাউকে দিয়ে দিন বা সরিয়ে রাখুন তাহলে শিশুর মায়ের বমির পাশাপাশি আপনার অস্বস্তির সম্ভাবনাও কমে যাবে প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাননিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুমানোর অভ্যাস আপনাকে সারাদিন সতেজ রাখতে পারে প্রতিদিন অন্তত ৭ ঘন্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন ঘুম নিয়মিত করতে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুনদাঁত ও মাড়ির যত্ন নিনমায়ের দাঁত ও মাড়ির সমস্যার সাথে গর্ভের শিশু সময়ের আগে প্রসব হয়ে যাওয়া কম ওজনের শিশু জন্মানোসহ বিভিন্ন জটিলতার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছেতাই এই সপ্তাহেই ডেন্টিস্ট এর কাছে গিয়ে দাঁত ও মাড়ি পরীক্ষা করিয়ে ফেলুন নিয়মিত দাঁত জিহ্বা ও মাড়ির যত্ন নিনদ্বিতীয় চেকআপ করিয়ে ফেলুনগর্ভের শিশু ঠিকমতো বেড়ে উঠছে কি না আপনার স্বাস্থ্য কেমন আছে কী করলে আপনারা দুজনই সুস্থ থাকবেন—এসব জানতে নিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপে যাওয়া জরুরি ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত মাসে একবার করে চেকআপে যাওয়া প্রয়োজন এই মাসের চেকআপ করানোর ব্যবস্থা করে ফেলুনমনে করে আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাবেনশিশুর ব্রেইন এত দ্রুত বেড়ে উঠছে যে এখনো তার মাথাটা দেহের তুলনায় অনেকটা বড়সড় মুখমণ্ডল চোখনাককান তৈরিও এগিয়ে যাচ্ছে এসব যাতে সঠিকভাবে তৈরি হতে পারে সেজন্য আগের সপ্তাহগুলোর মতো এই সপ্তাহেও অবশ্যই মনে করে প্রতিদিন আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন আপনার গর্ভের শিশু এখন প্রায় ৩০ মিলিমিটার লম্বা—একটি ছোট্ট স্ট্রবেরির সমানশিশুর হার্ট খুব দ্রুত স্পন্দিত হচ্ছেআপনার গর্ভের শিশুর হার্ট কয়েক সপ্তাহ আগে নিজে নিজে স্পন্দিত হতে শুরু করেছে এখন সেই ছোট্ট হার্ট মিনিটে প্রায় ১৬০ বার করে স্পন্দিত হচ্ছে অর্থাৎ শিশুর হার্টবিট আপনার হার্টবিটের তুলনায় প্রায় দুই গুণেরও বেশি দ্রুত গতিতে চলছেশিশু অল্প অল্প করে নড়াচড়া করতে শুরু করেছেআপনার শিশু এখন হালকা ঝাঁকুনি দিয়ে নড়াচড়া করতে পারেতবে বাইরে থেকে এই নড়াচড়া এখনো বোঝা সম্ভব নয় আলট্রাসনোগ্রামের মাধ্যমে এই নড়াচড়া বোঝা যেতে পারেশিশুর মুখমণ্ডল সুগঠিত হচ্ছেআপনার গর্ভে ছোট্ট শিশু খুব দ্রুত বেড়ে উঠছে মুখমণ্ডলের বেশ কয়েকটা অংশ এখন অনেক স্পষ্টচোখের বিকাশ এগিয়ে যাচ্ছে ছোটো ছোটো দুধ দাঁত তৈরির প্রক্রিয়া চলছে কান ও নাকের বিভিন্ন অংশ আরও বিকশিত হচ্ছেশিশুর লেজ মিলিয়ে যাবেপ্রথমদিকে শিশুর একটা ছোট্ট লেজ থাকে এ সপ্তাহের মধ্যে সেই লেজটা মিলিয়ে যাবেশিশুর হাতপা বেশ দ্রুত বেড়ে উঠছেআপনার শিশুর হাত–পাগুলো আরও লম্বা হচ্ছে কনুই ও হাঁটু স্পষ্ট হতে শুরু করেছে সে এখন তার কনুই ভাজ করতে পারে হাত–পায়ে ছোটো ছোটো জোড়া লাগানো আঙুলগুলো এ সপ্তাহে আলাদা হয়ে যাবে এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের আকার প্রায় একটি বড়সড় মালটার সমান হয়ে গেছে আপনার আগের জামা–কাপড়গুলো পরতে গেলে এখন কিছুটা আঁটসাঁট লাগতে পারেডেন্টিস্টের কাছে চেকআপগর্ভাবস্থায় দাঁত ও মাড়ির যত্ন নেওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ মায়ের দাঁত ও মাড়ির অসুস্থতার সাথে গর্ভের শিশু সময়ের আগে প্রসব হয়ে যাওয়া এবং কম ওজনের শিশু জন্মানোর সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে তাই এ সপ্তাহে দাঁতের ডেন্টিস্ট এর কাছে গিয়ে দাঁত ও মাড়ি পরীক্ষা করিয়ে ফেলুন এবং এসময়ে দাঁতের যত্নের প্রতি বিশেষ নজর দিনদিনে ২ বার ২ মিনিট ধরে ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করুন দিনে অন্তত একবার ফ্লস ব্যবহার করে আপনার দাঁতের মাঝে জমে থাকা ছোটো ছোটো খাবারের টুকরা পরিষ্কার করে ফেলুনগর্ভাবস্থায় দাঁত ও মাড়ির যত্নের ঘরোয়া উপায়গুলো জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনপর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমঃআপনার কি ঘুম থেকে উঠতে খুব কষ্ট হয় ওঠার পর ফ্রেশ লাগে না তাহলে হয়তো আপনি যথেষ্ট ঘুমাচ্ছেন না অথবা ঘুম ভালো হচ্ছে না গর্ভাবস্থায় ঘুমে সমস্যার সাথে অনেকগুলো জটিলতার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে সাম্প্রতিক গবেষণা যেমন গর্ভকালীন ডায়াবেটিস গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ সিজারের মাধ্যমে সন্তান প্রসব প্রিম্যাচিউর সন্তান প্রসব বা সময়ের আগেই সন্তান প্রসব হওয়া এমনকি মৃতপ্রসব হওয়াসাধারণত দিনে অন্তত ৭ ঘন্টা ঘুম প্রয়োজন ঘুম নিয়মিত করতে প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম হওয়ার জন্য রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যেতে পারেনএ সম্পর্কে আরও জানতে চাইলে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনআলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষাঃআপনার প্রথম আল্ট্রাসনোগ্রাম করানোর সময় প্রায় চলে এসেছে এই পরীক্ষার সাহায্যে আপনার গর্ভের ছবি তোলা হবে আল্ট্রাসনোগ্রাম থেকে আপনার ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ গর্ভে একাধিক শিশু আছে কি না গর্ভের শিশু ঠিকমতো বেড়ে উঠছে কি না—এমন সব গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানতে পারবেনপরীক্ষাটা করতে ২০ মিনিটের মতো সময় লাগে এতে সাধারণত কোনো ব্যথা হয় না ডাক্তার আপনাকে সাধারণত গর্ভাবস্থার ১০–১৪তম সপ্তাহে প্রথম আলট্রাসনোগ্রাম করানোর পরামর্শ দিবেনপরীক্ষার প্রস্তুতি কীভাবে নিবেন কী কী দেখা যাবে শিশু ছেলে না কি মেয়ে বোঝা যাবে কি না—এসব প্রশ্নের উত্তর জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনখাবারে অরুচিঃএসময়ে আপনার কিছু খাবারে এমনকি প্রিয় কোনো খাবারেও হঠাৎ করেই অরুচি শুরু হতে পারে হতে পারে যে সেসব খাবার দেখলে বা গন্ধ পেলে আপনার বমি বমি লাগে এই লক্ষণটা খুব কমনতাই দুশ্চিন্তা না করে যেসব খাবার খেতে ভালো লাগে সেগুলোই খান সাথে যে খাবারে আপনার অরুচি হয় তার পুষ্টিকর বিকল্প বেছে নিন যেমন মাংসে অরুচি হলে এর পরিবর্তে ডাল অথবা ডিম খেতে পারেন—যাতে প্রোটিন আছে আর যেসব খাবার এমনিতেও স্বাস্থ্যের জন্য ভালো নয় সেগুলোতে অরুচি হলে তো ভালোই হয়পেট ফাঁপাআপনি হয়তো খেয়াল করবেন যে আপনার পেট ফাঁপা লাগছে ঢেঁকুর হচ্ছে কিংবা বায়ুর সমস্যা হচ্ছে এসবের পেছনে রয়েছে গর্ভকালীন হরমোনের প্রভাব এমন একটি হরমোন হলো প্রোজেস্টেরন হরমোন যার প্রভাবে হজমের সাথে জড়িত পেশিগুলো কিছুটা শিথিল হয়ে আসে এবং হজমের গতি কমে যায় ফলে পেটে গ্যাস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পেট ফাঁপা লাগেআপনার খাবার ও খাবারের অভ্যাসে কিছু সহজ পরিবর্তন পেট ফাঁপা ও গ্যাসের সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে একেবারে অনেক খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে বারবার খেতে পারেন খাওয়ার সময়ে ধীরেসুস্থে খাবেন খাওয়ার পরে হালকা হাঁটাহাঁটি করতে পারেনআরও কিছু সহজ ও কার্যকর সমাধান জানতে আমাদের এই লেখাটি পড়তে পারেনঅন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহের অন্যান্য গর্ভকালীন লক্ষণের মধ্যে থাকতে পারে— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ক্লান্ত লাগা বমি বমি ভাব বা বমি একে অনেকসময় মর্নিং সিকনেস বলে তবে এই বমি ভাব দিনের যেকোনো সময়েই হতে পারে স্তনে হালকা ব্যথা হওয়া অথবা চাপ দিলে ব্যথা করা সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা অনুভব করা বুক জ্বালাপোড়া করা ও বদহজম হওয়া খাবারের অভ্যাসে লক্ষণীয় পরিবর্তন আসা হঠাৎ নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা দিতে পারে মুখে অদ্ভুত অথবা ধাতব স্বাদ পাওয়া মাথা ব্যথা মাথা ঘুরানো তীব্র ঘ্রাণশক্তি মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া ত্বক তেলতেলে হয়ে যাওয়া ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়া প্রথম আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষায় আপনিও সাথে যানগর্ভাবস্থায় সাধারণত তিনবার আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয় প্রথম আল্ট্রাসনোগ্রাম করতে বলা হয় গর্ভাবস্থার ১০১৪তম সপ্তাহে অর্থাৎ এই সপ্তাহে বা আগামী কয়েক সপ্তাহে শিশুর মা প্রথমবারের মত আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষাটি করাবেনএই পরীক্ষার সময়ে আপনিও তার সাথে যেতে চেষ্টা করেন তাহলে শিশু গর্ভে ঠিকমতো বেড়ে উঠছে কি না তা জানতে পারবেন সম্ভব হলে হয়তো তার হার্টবিটও শুনতে পারবেন সাথে আরও বেশ কয়েকটি বিষয় সম্পর্কে জানতে পারবেন যেমন— ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ কবে হতে পারে গর্ভে যমজ বা একাধিক শিশু আছে কি না এই পর্যায়ে শিশুর কোন শারীরিক ত্রুটি আছে কি না যেমন মেরুদণ্ড ঠিকমতো বন্ধ না হওয়া (স্পাইনা বিফিডা) ঘুমানোর তিন ঘন্টা আগে রাতের খাবার খাওয়ার অভ্যাস করুনএ সময়ে আপনার সঙ্গীর বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে সাধারণত খাওয়ার পর পরই শুয়ে পড়লে এই সমস্যা আরও বাড়তে পারে তাই আপনারা দুইজন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত তিন ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে ফেলার চেষ্টা করুনরাতের খাবার শোয়ার ৩–৪ ঘন্টা আগে খেয়ে নিলে বুক জ্বালাপোড়া হওয়ার সম্ভাবনা কমে যেতে পারে পাশাপাশি রাতের খাবার দুইজনে একসাথে খাওয়ার সময়ে সারাদিনের ঘটে যাওয়া বিভিন্ন বিষয় নিয়ে হালকা গল্প করতে পারেন এতে করে দুইজনের মনও কিছুটা হালকা হবে এ ছাড়াও আপনার সঙ্গী দিনের বেলা খাওয়ার পরও যেন তিন ঘন্টার মধ্যে শুয়ে না পড়ে সে বিষয়ে তাকে অনুরোধ করতে পারেনখাবারে স্বাস্থ্যকর বিকল্প খুঁজতে সাহায্য করুনএসময়ে শিশুর মায়ের কিছু খাবারে অরুচি দেখা দিতে পারে কিছু খাবার হয়তো তার একেবারেই সহ্য হবে না এর মধ্যে থাকতে পারে বিভিন্ন পুষ্টিকর খাবার যা ডায়েট থেকে সাময়িকভাবে বাদ দিতে হবে কিন্তু সেসবের পুষ্টি থেকে যেন বঞ্চিত না হন সেজন্য যে খাবারে শিশুর মায়ের অরুচি হয় সেগুলোর পুষ্টিকর বিকল্প খুঁজে বের করুনযেমন ইলিশ মাছে অরুচি হলে চাপিলা ও পুঁটির মতো বিকল্প বাজার থেকে কিনে আনতে পারেন এর সবগুলোই তৈলাক্ত মাছ যা গর্ভের শিশুর জন্য খুব উপকারীমাংসে অরুচি হলে তার পরিবর্তে ডাল অথবা ডিম খেতে পারেন—যাতে প্রোটিন আছে বাজার করা যদি আপনার দায়িত্ব হয় তাহলে সঙ্গীর রুচিঅরুচির কথা মাথায় রেখেই বাজারের লিস্ট তৈরি করবেনশিশুর মায়ের ঘুমানোর পরিবেশ সৃষ্টিতে সাহায্য করুনআপনার সঙ্গী প্রতিদিন অন্তত ৭ ঘন্টা ঘুমাতে পারছে কি না সেদিকে লক্ষ রাখুন এসময়ে নিয়মিত ও পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম শরীরকে সতেজ রাখতে সাহায্য করেআপনার সঙ্গী যখন ঘুমাচ্ছে তখন চেষ্টা করুন ঘরের বাতি নিভিয়ে ফেলতে জানালায় ভারী পর্দা লাগাতে পারেন যাতে বাইরে থেকে আলো না আসে সঙ্গীর ঘুমানোর সময়ে বিছানায় বসে মোবাইল কিংবা ল্যাপটপ ব্যবহার করা থেকেও বিরত থাকুন কেননা এসবের উজ্জ্বল আলো ঘুম আসতে বাধা দিতে পারে সম্ভব হলে নিজের ঘুমের শিডিউল সঙ্গীর ঘুমানোর সময়ের সাথে মিলিয়ে নিন ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুনগর্ভকালীন সময়ে ক্যাফেইন আছে এমন খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুন যেমন চা কফি কোক এনার্জি ড্রিঙ্কস কারণ ক্যাফেইন গর্ভের শিশুর ওজন কম হওয়াসহ নানানভাবে ক্ষতি করতে পারেবসা অথবা শোয়া অবস্থা থেকে হুট করে উঠে দাঁড়াবেন নাঅনেকসময় চেয়ারে বসা অথবা বিছানায় শোয়া অবস্থা থেকে হঠাৎ করে দাঁড়িয়ে গেলে ব্রেইনে রক্ত সরবরাহ কমে যেতে পারে ফলে মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তাই বসা অথবা শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে ওঠার সময়ে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করুনআয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন চালিয়ে যানআপনার শিশু এখন দ্রুত বেড়ে উঠছে তার চোখনাককান ও ব্রেইন তৈরি হচ্ছে এসব যাতে সঠিকভাবে তৈরি হতে পারে সেজন্য আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও অবশ্যই মনে করে প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট সেবন চালিয়ে যাবেন আপনার গর্ভের শিশু এখন প্রায় একটি কুল বরইয়ের সমান লম্বা—৪১ মিলিমিটারের কাছাকাছিশিশু এখন ভ্রূণ থেকে ফিটাসএ সপ্তাহ থেকে আপনার ছোট্ট সোনামণির একটা পদোন্নতি হচ্ছে গত সপ্তাহ পর্যন্ত ছোট্ট শিশুটি একটি ভ্রূণ পর্যায়ে ছিল এই সপ্তাহ থেকে তাকে ডাক্তারি ভাষায় ফিটাস বলে ডাকা হবে[৫] কারণ ইতিমধ্যে শিশুর শরীরের সব গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গের ভিত তৈরি হয়ে গিয়েছে বাকি মাসগুলোতে এই অঙ্গপ্রত্যঙ্গ আরও পরিণত ও বিকশিত হতে থাকবেছোট্ট শিশু এখন চোখ বুজে আছেআপনার শিশুর দুই চোখের পাতা এখন বন্ধ হয়ে আছে বেশ কয়েক মাস পর সে তার চোখের পাতা মেলবে মাথার দুই পাশে ছোটোখাটো কান দুটো আরও স্পষ্ট হচ্ছেশিশুর মাথাটা এখন বেশ বড়ছোট্ট শিশুর মাথাটা এখনো শরীরের বাকি অংশের তুলনায় বেশ বড় পুরো শরীরের প্রায় অর্ধেকের সমান লম্বা তার মাথা তবে দেহের বাকি অংশগুলো এখন দ্রুত বেড়ে উঠছেশিশু এখন নড়াচড়া করছেছোট্ট শিশু আপনার পেটের ভেতরে নড়াচড়া শুরু করে দিয়েছে তবে আপনি এখনই এসব নড়াচড়া টের পাবেন না—আরও কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে আগামী সপ্তাহ পার হলেই আপনার গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস পূর্ণ হয়ে যাবে তখন শরীরের হরমোনগুলো স্থিতিশীল হতে থাকে ফলে অনেকের চেহারায় একটা লাবণ্যময় আভা আসে আর ক্লান্তি অনেকটা কমে আসতে থাকেসবুজ শাকঃসবুজ শাকে গর্ভের শিশুর জন্য উপকারী অনেক ধরনের ভিটামিন মিনারেল আছে যেমন ভিটামিন সি ভিটামিন কে পটাসিয়াম তাই প্রতিদিন কিছু সবুজ শাক খাওয়ার চেষ্টা করবেন পালং শাক হেলেঞ্চা শাক পুই শাক ডাঁটা শাক পাট শাক লাউ শাক কলমি শাক কচু শাকসহ যেসব সবুজ শাক আপনার জন্য সহজলভ্য সেগুলো খাওয়ার চেষ্টা করবেন আর দিনে সবমিলিয়ে অন্তত ৪০০ গ্রাম পরিমাণে ফলমূল ও শাকসবজি খাবেনগর্ভকালীন সময়ে আর কী কী খাবার খাওয়া গুরুত্বপূর্ণ—এসব জানতে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা লেখাটি পড়ুন ক্যাফেইন এড়িয়ে চলা গর্ভকালীন সময়ে ক্যাফেইনযুক্ত খাবার অথবা পানীয় এড়িয়ে চলা প্রয়োজন যেমন চা কফি নির্দিষ্ট সফট ড্রিঙ্কস ও এনার্জি ড্রিঙ্কস কারণ ক্যাফেইনযুক্ত খাবার বা পানীয় গর্ভের শিশুর ক্ষতি করতে পারে জন্মের সময় শিশুর ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে গবেষণায় দেখা গেছে যে ক্যাফেইন গর্ভপাত ও মৃতপ্রসব হওয়ার সম্ভাবনাও বাড়িয়ে দিতে পারে তাই আপনার চাকফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে সেটা ছেড়ে দিন বিকল্প হিসেবে আপনি চা পাতা ছাড়া বানানো আদা চা কিংবা মসলা চা বেছে নিতে পারেনক্যাফেইন ছাড়তে না পারলে যতটুকু সম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করবেন এবং অবশ্যই সবমিলিয়ে দিনে ২০০ মিলিগ্রামের কম খাবেন সাধারণত ২ কাপ ইনস্ট্যান্ট কফি কিংবা ২–৩ কাপ চায়ে এই পরিমাণ ক্যাফেইন থাকতে পারে সফট ড্রিঙ্কস (যেমন কোকপেপসি ও এনার্জি ড্রিঙ্কস)এ ক্যাফেইন থাকে তাই গর্ভাবস্থায় এগুলো পরিহার করবেনএকবার দুইবার চাকফি বা কোক খেয়ে ফেললে অনেক দুশ্চিন্তা করবেন না গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে ক্যাফেইনের পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ে তাই যতটা সম্ভব অল্প পরিমাণে খাবেন আর গর্ভাবস্থার সময়টুকুতে ছেড়ে দিতে পারলে সবচেয়ে ভালোমাথা ব্যথাঃএই সময়ে আপনার প্রায়ই মাথা ব্যথা হতে পারে হালকা মাথা ব্যথা হলে আপনি মাথায় ঠাণ্ডা সেঁক দিতে পারেন খেয়াল করে দেখুন আপনার পানিশূন্যতা এবং ঘুমের অভাব হচ্ছে কি না যেহেতু এগুলোর কারণেও আপনার মাথা ব্যথা হতে পারে গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন ২–৩ লিটার পানি পান এবং রাতে অন্তত ৭ ঘন্টা ভালোমতো ঘুমানোর চেষ্টা করবেনমাথা ব্যথার আরও কিছু সহজ ঘরোয়া সমাধান এবং কখন মাথা ব্যথা হলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে—এসব জানার জন্য গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা আর্টিকেলটি পড়ুনমাথা ঘুরানোঃএসময়ে আপনার মাথা ঘুরানোর সমস্যা দেখা দিতে পারে বিশেষ করে চেয়ারে বসা অথবা বিছানায় শোয়া অবস্থা থেকে হঠাৎ উঠতে গেলে ব্রেইনে রক্ত সরবরাহ কমে গিয়ে এমন হতে পারে তাই বসা অথবা শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে ওঠার সময় ধীরে ধীরে ওঠার চেষ্টা করুন একটানা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকবেন না কারণ তাতেও মাথা ঘোরাতে পারেএই সমস্যার আরও কিছু ঘরোয়া সমাধান এবং কখন মাথা ঘুরালে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে জানার জন্য গর্ভাবস্থায় মাথা ঘুরানো আর্টিকেলটি পড়ুনমাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাতঃগর্ভাবস্থায় যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হতে পারে এসব লক্ষণ দেখা দেওয়া মানেই যে গর্ভধারণে কোনো জটিলতা সৃষ্টি হয়েছে—এমন নয় তবে গর্ভপাতের মতো জটিলতার ক্ষেত্রেও এমন লক্ষণ দেখা দেয় তাই গর্ভাবস্থায় যোনিপথে রক্তপাত হলে মা ও গর্ভের শিশুর সুস্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়ার জন্য দ্রুত ডাক্তার দেখানো প্রয়োজনঅন্যান্য লক্ষণঃএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার আরও যেসব গর্ভকালীন লক্ষণ থাকতে পারে সেগুলো হলো— পেটের বাড়ন্ত অংশের চারপাশে ব্যথা হওয়া বমি বমি ভাব বা বমি একে অনেকসময় মর্নিং সিকনেস বলে তবে এই বমি ভাব দিনের যেকোনো সময়েই হতে পারে ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে মুখে অদ্ভুত অথবা ধাতব স্বাদ পাওয়া স্তনে হালকা ব্যথা হওয়া অথবা চাপ দিলে ব্যথা করা বুক জ্বালাপোড়া করা ও বদহজম হওয়া খাবারের অভ্যাসে লক্ষণীয় পরিবর্তন আসা হঠাৎ কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা দিতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু খাবারের গন্ধে বমি বমিও লাগতে পারেতীব্র ঘ্রাণশক্তি সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা অনুভব করা মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া ত্বক তেলতেলে হয়ে যাওয়া ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়া পেটে অস্বস্তি বা পেট ফাঁপা হয়েছে এমন মনে হওয়া সম্ভব হলে বাসায় ক্যাফেইনযুক্ত খাবারপানীয় এড়িয়ে চলুনগর্ভবতী মায়েদের ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলতে হয় যেমন চা কফি নির্দিষ্ট সফট ড্রিঙ্কস ও এনার্জি ড্রিঙ্কস কারণ ক্যাফেইন বিভিন্নভাবে গর্ভের শিশুর ক্ষতি করতে পারে গর্ভের শিশু স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন নিয়ে জন্মাতে পারে এ ছাড়াও গর্ভপাত ও মৃতপ্রসব হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারেআপনার কিংবা বাসার অন্য কারো যদি এসব ক্যাফেইনযুক্ত খাবার (যেমন চাকফি) খাওয়ার অভ্যাস থাকে তাহলে শিশুর মায়ের জন্য এগুলো এড়িয়ে চলা কঠিন হতে পারে যদি চাকফি বানানোর দায়িত্ব শিশুর মায়ের ওপর থাকে তাহলে হয়তো ব্যাপারটা আরও চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়বেতাই এসময়টায় চাকফি খেতে ইচ্ছে হলে নিজেরা বানিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন বাসায় মেহমান আসলে চাকফির বিকল্প কোনো পানীয় দিয়ে আপ্যায়ন করতে পারেনএ ছাড়াও কোমল পানীয় (যেমন কোক বা পেপসি)তেও ক্যাফেইন থাকে তাই এসময়ে এগুলো বাসায় না আনার চেষ্টা করবেন তাহলে শিশুর মায়েরও এগুলো এড়িয়ে চলতে সুবিধা হবেক্যাফেইনের পরিমাণ বাড়ার সাথে সাথে ক্ষতির সম্ভাবনা বাড়ে তাই হঠাৎ দুএকবার খেয়ে ফেললে সেটা নিয়ে অনেক দুশ্চিন্তা করবেন নাশিশুর মায়ের পছন্দের খাবারগুলো আনার চেষ্টা করুনএসময়ে শিশুর মায়ের নানান ধরনের খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হতে পারে যেমন কোনো টক বা মিষ্টি ফল কিংবা কোনো নির্দিষ্ট তরকারি তার কী কী খেতে ইচ্ছা করে সেটি জেনে নেওয়ার চেষ্টা করুন তাহলে সেই অনুযায়ী আপনি বাজার থেকে তার পছন্দমতো খাবারগুলো কিনে আনতে পারবেনশিশুর মায়ের যদি অস্বাস্থ্যকর কোনো খাবার খেতে ইচ্ছা করে তবে তার কাছাকাছি স্বাদের স্বাস্থ্যকর খাবার খুঁজে নিতে সাহায্য করতে পারেনসবুজ শাক খেতে সাহায্য করুনফলমুল ও শাকসবজিতে শিশুর সুস্থ ও স্বাভাবিক বেড়ে ওঠার জন্য গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান থাকে পাশাপাশি এগুলোতে ভালো পরিমাণে ফাইবার বা আঁশ থাকে যা শিশুর মায়ের হজমে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে তাই সঙ্গীর খাবার তালিকায় যেন নিয়মিত অন্তত ৪০০ গ্রাম ফলমুল ও শাকসবজি থাকে সেদিকে লক্ষ রাখুনআপনি যদি বাজারের দায়িত্বে থাকেন তাহলে কেনাকাটা করার সময়ে শাকসবজিফলমূল নেওয়ার ব্যাপারটা মাথায় রাখবেন বিশেষ করে গাঢ় সবুজ শাকসবজি যেন মায়ের খাবার তালিকায় নিয়মিত জায়গা পায় সেদিকে খেয়াল রাখবেন যেমন পালংশাক পুঁইশাক লাউশাক হেলেঞ্চা শাক পুই শাকএগুলোতে প্রচুর ভিটামিন ও মিনারেল থাকে যা ছোটোবড় নানান রোগ প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপড়ুন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকামাথা ঘুরানো কমাতে ছোট্ট সাহায্য করুনশিশুর মায়ের মাথা ঘুরানোর সমস্যা থাকলে তাকে যেন উপুড় হয়ে কোনো কাজ করতে না হয় সেদিকে লক্ষ রাখুন নিচে কোনো কিছু পড়ে থাকলে আপনি সেটি তুলে দিয়ে সাহায্য করতে পারেন জুতা পরার সময়ে তাকে একটি চেয়ার অথবা টুল এগিয়ে দিয়ে সাহায্য করতে পারেনকেননা উপুড় হয়ে কোনো কাজ করলে মাথা ঘোরার সমস্যা আরও বাড়তে পারে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সংগ্রহ করে রাখুনআগামী সপ্তাহ থেকে প্রতিদিন ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সেবন করতে হবে বাংলাদেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গর্ভবতী নারীদের বিনামূল্যে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট বিতরণ করা হয় নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এ সপ্তাহেই ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সংগ্রহ করে নিন যাতে আগামী সপ্তাহে সময়মতো খাওয়া শুরু করতে পারেনপ্রথম আল্ট্রাসনোগ্রাম করে ফেলুনগর্ভাবস্থার ১০তম–১৪তম সপ্তাহের মধ্যে প্রথম আলট্রাসনোগ্রাম করে ফেলার চেষ্টা করুন এই পরীক্ষার মাধ্যমে আপনি ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ সম্পর্কে জানতে পারবেন সেই সাথে গর্ভের শিশু ঠিকমতো বেড়ে উঠছে কি না গর্ভে একাধিক শিশু আছে কি না—এমন সব তথ্যও জানা যাবেমনে করে আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাবেনগর্ভের শিশুর সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করতে আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও অবশ্যই মনে করে প্রতিদিন আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন আপনার গর্ভের শিশু এখন প্রায় ৫৪ সেন্টিমিটার লম্বা—প্রায় একটি কাগজি লেবুর সমান তার ওজন এখন ১৮ গ্রামের কাছাকাছি অর্থাৎ সে এখন প্রায় তিনটি আঙুরের সমান ভারীছোট্ট শিশুকে ঘিরে আছে অ্যামনিওটিক ফ্লুইডছোট্ট সোনামণি আপনার জরায়ুর ভেতরে পানির মতো তরল পদার্থ দিয়ে ঘেরা আছে ডাক্তারি ভাষায় এই বিশেষ ধরনের তরল পদার্থকে বলা হয় অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এই সপ্তাহে অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের পরিমাণ ৩০ মিলিলিটারের কাছাকাছিঅ্যামনিওটিক ফ্লুইড শিশুর নড়াচড়ায় সাহায্য করে আপনার গর্ভের ভেতরে সে বেশ নড়াচড়া করছে তবে বাইরে থেকে এখনো আপনি তা বুঝতে পারবেন নাহাতের আঙ্গুলের নখ তৈরি হচ্ছেছোট্ট শিশুর হাতপায়ের আঙুলগুলো প্রথমে একসাথে জোড়া লাগানো অবস্থায় থাকে এখন সেগুলো আলাদা হয়ে গেছে প্রতিটি আঙুল এখন বেশ স্পষ্ট বোঝা যাচ্ছে শিশুর হাতের আঙুলগুলোতে ছোট্ট ছোট্ট নখ তৈরি হতে শুরু করেছেশিশুর লিভার রক্ত তৈরি করছেছোট্ট শিশুর লিভারের ওজন এখন তার পুরো শরীরের ওজনের ১০ অর্থাৎ ১০ ভাগের ১ ভাগ শিশুর লিভার এখন নিজে নিজেই রক্ত কণিকা তৈরি করছেশিশু গিলতে শিখে যাচ্ছেএই সপ্তাহের মধ্যে আপনার শিশু মুখ দিয়ে কীভাবে গিলতে হয় সেটা শিখে যাবে পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য অঙ্গগুলোও তাদের নিজেদের কাজ শিখে নিতে শুরু করেছেআল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষায় ছোট্ট শিশুর হার্টবিট বোঝা যাবেছোট্ট শিশুর হৃৎপিণ্ড এখন নিজে নিজেই স্পন্দিত হয় এই সপ্তাহে আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করালে আপনার গর্ভের শিশুর হার্টবিট শোনা যাবে সাধারণত গর্ভাবস্থার ১০–১৪তম সপ্তাহে প্রথম আলট্রাসনোগ্রাম করাতে পরামর্শ দেওয়া হয় এই সপ্তাহটি পার হলেই আপনার গর্ভধারণের তিন মাস পূর্ণ হয়ে যাবে চতুর্থ মাস আসতে আর মাত্র কয়েক দিন বাকি এই সময়ে আপনার নিজেকে আগের চেয়ে প্রাণবন্ত মনে হতে পারে ক্লান্তি কমে যাওয়ার কারণে আপনি কাজকর্মে উদ্দীপনা ফিরে পেতে পারেনতবে সব গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে এসব সমস্যা একইভাবে প্রকাশ পায় না এবং একইভাবে কমেও যায় না তাই আপনার ক্ষেত্রে এসব সমস্যা তেমন একটা নাও কমতে পারেবাড়ন্ত পেটআজকাল আপনি হয়তো আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে কিংবা পেটে হাত বুলিয়ে বুঝতে চেষ্টা করছেন যে আপনার পেট একটু একটু করে বড় হচ্ছে কি না এই সময়ে আপনার বাড়ন্ত পেটের একটি ছবি তুলে রাখতে পারেন—যা এই সপ্তাহের একটি স্মৃতি হয়ে থাকবে আপনার কাছেএসময়ে আপনার পেটের আকারে তেমন কোনো লক্ষণীয় পরিবর্তন আসতেও পারে কিংবা নাও আসতে পারে কেননা গর্ভকালীন সময়ে সব গর্ভবতীর পেটের আকার একই হারে বাড়ে না আপনার পেট বড় হওয়ার হার নির্ভর করে মূলত আপনার শরীরে হরমোন গর্ভধারণের আগের ওজন গর্ভে শিশুর সংখ্যা এবং আপনার শরীরের পেশির শক্তিমাত্রার ওপরতাই আয়নায় আপনার পেট দেখতে এখনো আগের মতো লাগতে পারে আবার হয়তো পেটের আকার সামান্য বেড়ে যাওয়ার কারণে আপনার আগের জামাকাপড় এখন কিছুটা আঁটসাঁট লাগতে পারে তবে যাইই হোক না কেন এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই এই সময়ে পেটের আকার একটু বড় হওয়া কিংবা না হওয়া—দুইটিই স্বাভাবিকগর্ভাবস্থার কোন সময়ে আপনার পেটের আকার কেমন হবে জানার জন্য গর্ভাবস্থায় পেটের আকার আর্টিকেলটি পড়ুনগর্ভাবস্থায় ওজনঃএই সপ্তাহ থেকে আপনার ওজন নিয়মিত নোট করে রাখার অভ্যাস শুরু করতে পারেন এতে করে পুরো গর্ভকালীন সময় জুড়ে আপনার ওজন ঠিকমতো বাড়ছে কি না তা বুঝতে সুবিধা হবেকতটুকু ওজন বৃদ্ধি পাওয়া উচিত তা অনেকাংশে নির্ভর করে গর্ভধারণের আগে আপনার ওজন কেমন ছিল তার ওপর গর্ভধারণের আগে ওজন স্বাভাবিক হলে পুরো গর্ভাবস্থায় ১১৫ কেজি থেকে ১৬ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়াটা স্বাভাবিকগর্ভবতী হওয়ার আগে অতিরিক্ত ওজন হলে গর্ভাবস্থায় কতখানি ওজন বাড়া উচিত তা জানতে গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন আর্টিকেলটি পড়তে পারেনক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সংগ্রহ করাগর্ভাবস্থায় নিয়মিত ক্যালসিয়াম খেলে আপনার প্রিএক্লাম্পসিয়া নামক গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপজনিত মারাত্মক জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কমতে পারে তাই প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবার রাখা প্রয়োজন পাশাপাশি বাড়তি চাহিদা মেটাতে আপনাকে আগামী সপ্তাহ থেকে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সেবন করতে হবেবাংলাদেশের সব সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গর্ভবতী নারীদের বিনামূল্যে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট বিতরণ করা হয় নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে এই সপ্তাহেই ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সংগ্রহ করে নিন যাতে আগামী সপ্তাহে সময়মত খাওয়া শুরু করতে পারেনগর্ভাবস্থায় যেসব ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান বিশেষভাবে প্রয়োজন সেগুলোর তালিকা পেতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনকোষ্ঠকাঠিন্যআজকাল আপনার পায়খানা করতে কষ্ট অর্থাৎ কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে নানান কারণে এমন হতে পারে যেমন এই সময়ে প্রোজেস্টেরন নামক এক ধরনের গর্ভকালীন হরমোনের প্রভাবে আপনার হজমের গতি কমে যেতে পারে ফলে খাবার হজম হয়ে মল তৈরি হতে বেশি সময় লাগার কারণে পায়খানা কষা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা এড়াতে চেষ্টা করুন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করার এজন্য প্রতিদিন কমপক্ষে ২–৩ লিটার বা ৮–১২ গ্লাস পানি পান করুন পাশাপাশি শরীর সচল রাখার জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুন প্রতিদিন আঁশযুক্ত খাবার খান যেমন শাকসবজি ফলমূল এবং লাল চাল ও লাল আটার মতো গোটা শস্যদানার তৈরি খাবার এতে করে আপনার সমস্যা কিছুটা কমতে পারেকোষ্ঠকাঠিন্য থেকে রেহাই পাওয়ার আরও কিছু ঘরোয়া সমাধান সম্পর্কে জানতে গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য আর্টিকেলটি পড়ুনপেট কামড়ানো বা পেট ব্যথাবাড়ন্ত শিশুকে ধারণের জন্য আপনার জরায়ু ক্রমাগত বড় হচ্ছে জরায়ু বড় হওয়ায় আশেপাশের মাংসপেশি ও লিগামেন্টে চাপ পড়ে লিগামেন্ট হলো সুতার মতো কিছু টিস্যু যার মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকে মাংসপেশি ও লিগামেন্টে চাপ পড়ার ফলে পেটে হালকা ব্যথা হতে পারে এতে দুশ্চিন্তা করবেন নাতবে যদি তীব্র পেট ব্যথা হয় অথবা ঘন্টাখানেক বিশ্রাম করার পরেও ব্যথা না যায় কিংবা ব্যথার সাথে যোনিপথে রক্তপাত হলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন কেননা গর্ভপাতের মতো মারাত্মক সমস্যার কারণেও আপনার পেট ব্যথা হতে পারে পেট ব্যথা হওয়ার আরও নানান কারণ ও চিকিৎসা সম্পর্কে জানতে গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা আর্টিকেলটি পড়ুনঅন্যান্য লক্ষণঃএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার আরও যেসব গর্ভকালীন লক্ষণ থাকতে পারে সেগুলো হলো— বমি বমি ভাব হওয়া ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে মুখে অদ্ভুত অথবা ধাতব স্বাদ পাওয়া স্তনে হালকা ব্যথা হওয়া অথবা চাপ দিলে ব্যথা করা বুক জ্বালাপোড়া করা ও বদহজম মাথা ব্যথা মাথা ঘুরানো খাবারের অভ্যাসে লক্ষণীয় পরিবর্তন আসা হঠাৎ কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা দিতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু খাবারের গন্ধে বমি বমিও লাগতে পারে তীব্র ঘ্রাণশক্তি সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে পিরিয়ড বা মাসিকের ব্যথার মতো তলপেটে মোচড় দিয়ে ব্যথা অনুভব করা মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়া পেট ফাঁপা লাগা রাগ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুনছোটোবেলা থেকে শিশুরা তার আশেপাশের মানুষ বিশেষত মাবাবাকে অনুসরণ করার চেষ্টা করে তাই আপনাদের ছোট্ট সোনামণি বড় হয়ে সবার সাথে কেমন ব্যবহার করবে বা কীভাবে কথা বলবে—এসব সে ছোটোবেলা থেকেই আপনাদের কাছ থেকে শিখতে শুরু করবেআপনার শিশুর কাছে আপনি বাবা হিসেবে কেমন হতে চান—এসব নিয়ে অল্পস্বল্প চিন্তাভাবনা শুরু করতে পারেন আপনার আচরণে যদি এমন কোনো দিক থাকে যা আপনি পালটে ফেলতে চান এখন থেকেই সেই বিষয়ে মনোযোগ দিতে পারেন যদি হুটহাট রেগে যাওয়া কিংবা চিৎকার করার অভ্যাস থাকে তাহলে তা পরিবর্তনের চেষ্টা করুনক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সংগ্রহে সাহায্য করতে পারেনশিশুর মাকে আগামী সপ্তাহ থেকে শুরু করে ডেলিভারির আগ পর্যন্ত প্রতিদিন ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে হবে তাই এই সপ্তাহে বাসায় ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট এনে রাখতে সাহায্য করতে পারেন যাতে আগামী সপ্তাহে সময়মতো খাওয়া শুরু করা যায়অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলুনআপনার ওজন অতিরিক্ত হলে এখন কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে পারেন কারণ ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি হলে বেশ কিছু অসুখবিসুখে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় শিশুর মা যেহেতু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চলার চেষ্টা করছে আপনিও তার সাথে যোগ দিলে হয়তো ওজন কমানো সহজ হবেগর্ভাবস্থা সংক্রান্ত নানান ধরনের গুরুত্বপূর্ণ তথ্য সঠিকভাবে জানার চেষ্টা করুনএসময়ে আপনার সঙ্গীর নানান ধরনের স্বাস্থ্য সমস্যা হতে পারে তাই গর্ভকালীন সময়ের বিভিন্ন লক্ষণ ও সেগুলোর ঘরোয়া সমাধান জানার চেষ্টা করুন এখন থেকে প্রতিদিন ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেনআপনার ও গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্য ক্যালসিয়াম খুব গুরুত্বপূর্ণ গর্ভাবস্থায় ক্যালসিয়ামের চাহিদা বেড়ে যায় এই বাড়তি চাহিদা মেটাতে ক্যালসিয়ামযুক্ত খাবারের পাশাপাশি এখন থেকে প্রতিদিন ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাবেনসহবাসের ইচ্ছা বেড়ে যেতে পারেসহবাসের ইচ্ছা বেড়ে গেলে ঘাবড়ে যাবেন না গর্ভকালীন কোনো জটিলতা কিংবা ডাক্তারের নিষেধ না থাকলে গর্ভাবস্থায় সহবাস সম্পূর্ণ নিরাপদপ্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানগর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পুরো গর্ভাবস্থা জুড়ে আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া প্রয়োজন তাই আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানএ মাসের চেকআপ করিয়ে ফেলুনএ সপ্তাহে আপনার তৃতীয় গর্ভকালীন চেকআপের সময় হয়ে গিয়েছে সেটার জন্য প্রস্তুতি নিন কোনো প্রশ্ন মাথায় আসলে তা লিখে নিয়ে যান এতে চেকআপের দিন তাড়াহুড়ায় থাকলেও প্রশ্ন ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না আপনার গর্ভের শিশু এখন প্রায় ৭৪ সেন্টিমিটার লম্বা—একটি আমড়ার সমান তার ওজন এখন প্রায় ২৫ গ্রাম একটা টুথব্রাশে টুথপেস্ট নিলে যতটা ভারী লাগে সে এখন প্রায় ততটা ভারীশিশু গর্ভে নড়াচড়া করছেআপনার গর্ভের ছোটো জায়গাটুকুর মধ্যে শিশু চারপাশে ঘুরে–ফিরে নড়াচড়া শুরু করে দিয়েছে প্রথম দিকে সে কিছুটা ঝাঁকুনির মতো করে নড়াচড়া করে ধীরে ধীরে সে নানানভাবে নড়াচড়া করা শিখে যায় তবে এখনো আপনি তার নড়াচড়া বুঝতে পারবেন না এজন্য আপনাকে আরও কয়েক সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবেশিশুর জনন অঙ্গ তৈরি হচ্ছেগর্ভের শিশুর জনন অঙ্গ তৈরি হওয়া শুরু হয়ে গিয়েছে কয়েক সপ্তাহ আগে তবে এখনো পুরোপুরি পরিণত হয়নি ধীরে ধীরে তা বিকশিত হচ্ছে এ সপ্তাহে আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করলে সে ছেলে না কি মেয়ে সেটি সাধারণত বোঝা যায় নাশিশুর শারীরিক কাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছেইতোমধ্যে আপনার শিশুর পুরো শরীরের কাঠামো তৈরি হয়ে গিয়েছে তার শরীরের ভেতরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ ও মাংসপেশি তৈরি হয়ে গিয়েছে এসব এখন ধীরে ধীরে পরিণত হতে থাকবে গর্ভাবস্থার সেরা তিনটি মাসের শুরুতে আপনাকে স্বাগতম এখন থেকে পরবর্তী ৩ মাসকে অনেকেই গর্ভাবস্থার হানিমুন পিরিয়ড বা সোনালি সময় বলে এ সময়ে আপনার বমি বমি ভাব ও ক্লান্তি কিছুটা কমে যেতে পারে মনে হতে পারে যে আপনি শরীরে পুনরায় শক্তি ফিরে পাচ্ছেন পাশাপাশি আপনার ক্ষুধা এবং খাবারের প্রতি রুচিও বেড়ে যেতে পারেসহবাসের ইচ্ছা বেড়ে যাওয়াএসময়ে আপনার কোমরের নিচের দিকে এবং জরায়ুর আশেপাশের এলাকায় রক্ত সরবরাহের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় এজন্য আপনার সহবাসের ইচ্ছা বেড়ে যাতে পারে গর্ভকালীন জটিলতা না থাকলে এবং বিশেষ কোনো কারণে ডাক্তারের নিষেধ না থাকলে গর্ভাবস্থায় সহবাস করা নিরাপদ এতে গর্ভের সন্তানের আঘাত পাওয়ার বা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেইঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা কমে আসাএই সময়ে হয়তো বাইরে থেকে আপনার বাড়ন্ত পেট কিছুটা আঁচ করা সম্ভব আপনার বারবার প্রস্রাবের বেগ আসার সমস্যা থাকলে এই সপ্তাহে সেটি কমে যেতে পারে কেননা আপনার বাড়ন্ত জরায়ু মূত্রথলির ওপর থেকে কিছুটা দূরে সরে যাচ্ছেএই সপ্তাহে আপনার বমি বমি ভাব ও ক্লান্তি কিছুটা কমে যেতে পারে মনে হতে পারে যে আপনি শরীরে পুনরায় শক্তি ফিরে পাচ্ছেন পাশাপাশি আপনার ক্ষুধা এবং খাবারের প্রতি রুচিও বেড়ে যেতে পারেএই সপ্তাহ থেকে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে হবেআপনাকে এই সপ্তাহ থেকে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া শুরু করতে হবে এখন থেকে শুরু করে ডেলিভারির আগ পর্যন্ত প্রতিদিন ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেনক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার সময়ে ভরাপেটে খেলে ভালো হয় তবে মনে রাখবেন ক্যালসিয়াম ট্যাবলেটের সাথে একই সময়ে আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাবেন না এতে আয়রন ট্যাবলেটের কার্যকারিতা কমে যায়ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে অথবা ২ ঘণ্টা পরে আয়রন ট্যাবলেট খাবেনগর্ভাবস্থায় নিয়মিত ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেলে আপনার প্রিএক্লাম্পসিয়া নামক গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপজনিত মারাত্মক জটিলতার ঝুঁকি কমতে পারেগর্ভাবস্থায় আর কোন কোন ভিটামিন ও পুষ্টি উপাদান বিশেষভাবে প্রয়োজন সেগুলোর তালিকা পেতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনবাড়তি খাওয়াগর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাসে ওজন তেমন বাড়ে না এবং অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রয়োজন হয় না তবে গর্ভাবস্থার প্রথম ৩ মাস শেষ হয়ে গেলে খাবারের পরিমাণ একটু বাড়াতে হয় যেহেতু এই সপ্তাহ থেকে আপনার গর্ভাবস্থার চতুর্থ মাস শুরু হলো এখন আপনাকে কিছুটা বাড়তি খাবার খেতে হবেযদি গর্ভাবস্থার আগে আপনার ওজন স্বাভাবিক হয়ে থাকে তাহলে এই সপ্তাহ থেকে আপনি দিনে ৩৪০ ক্যালরি পরিমাণ অতিরিক্ত খাবার খাবেন গর্ভাবস্থার ৬ মাস পূর্ণ হলে অতিরিক্ত খাবারের পরিমাণটা আরেকটু বাড়াতে হবে অতিরিক্ত ক্যালরির চাহিদা মেটাতে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিবেনকোন ধরনের খাবার ভালো হবে তা জানতে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা দেখে নিতে পারেনতৃতীয় চেকআপআপনার তৃতীয় গর্ভকালীন চেকআপের সময় হয়ে এসেছে সেটার জন্য প্রস্তুতি নিন কোনো প্রশ্ন মাথায় আসলে তা লিখে নিয়ে যান এতে চেকআপের দিন তাড়াহুড়ায় থাকলেও প্রশ্ন ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে নানিয়মিত চেকআপে যাওয়া আপনার ও গর্ভের শিশুর সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চেকআপে কোনো সমস্যা ধরা পড়লে দ্রুত পরীক্ষানিরীক্ষা করে সেটার চিকিৎসা শুরু করা যাবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্তঅন্যান্য লক্ষণঃএ সময়ে আপনার পিপাসা বেড়ে যেতে পারে তাই বেশি বেশি পানি ও তরল খাবার খাবেন সেই সাথে এ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা একে লিগামেন্টের ব্যথা বলা হয় মাথা ব্যথা নাক থেকে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা স্তনে ব্যথা পা কামড়ানো বেশি গরম লাগা মাথা ঘুরানো হাত–পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন— বমি বমি ভাব খাবারের অভ্যাসে লক্ষণীয় পরিবর্তন আসা হঠাৎ কোনো খাবারে অরুচি কিংবা নতুন কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা দেখা দিতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু খাবারের গন্ধে বমি বমিও লাগতে পারে তীব্র ঘ্রাণশক্তি ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এ সময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে গর্ভাবস্থার সেরা তিনটি মাসের শুরুতে আপনাকে স্বাগতম গর্ভাবস্থার মাঝের ৩ মাসকে অনেকেই গর্ভাবস্থার সোনালি সময় বা হানিমুন পিরিয়ড বলে শিশুর মাকে এখন বাইরে থেকে দেখে গর্ভবতী মনে হচ্ছে বমিভাবসহ বিভিন্ন শারীরিক অসুবিধা হয়তো অনেকটাই চলে গিয়েছে তাই এখনকার এই সময়টা দুজনে মিলে যতটা সম্ভব উপভোগ করার চেষ্টা করুনশিশুর মায়ের সহবাসের ইচ্ছায় পরিবর্তন আসা স্বাভাবিকএ সময়ে শিশুর মায়ের সহবাসের ইচ্ছা বেড়ে যেতে পারে কোনো গর্ভকালীন জটিলতা না থাকলে এবং ডাক্তারের বিশেষ নিষেধাজ্ঞা না থাকলে গর্ভাবস্থায় সহবাস করা নিরাপদ এতে গর্ভের সন্তানের আঘাত পাওয়ার বা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেইগর্ভাবস্থা জুড়ে শিশুর মায়ের সহবাসের ইচ্ছার পরিবর্তন হতে পারে কখনো ইচ্ছা বেড়ে যেতে পারে আবার কখনো একেবারেই কমে যেতে পারে এমন হওয়া স্বাভাবিক এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না এই ব্যাপারে আপনাদের মধ্যে যোগাযোগ ও পারস্পরিক বোঝাপড়া খুব গুরুত্বপূর্ণ তাই এই বিষয়ে আপনার মনে কোনো প্রশ্ন বা দ্বিধা থাকলে সঙ্গীর সাথে খোলাখুলি কথা বলুনযেসব ক্ষেত্রে সহবাস করা থেকে বিরত থাকবেনগর্ভাবস্থায় সহবাস করা নিরাপদ হলেও কিছু কিছু ক্ষেত্রে সহবাস করলে গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর জন্য সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে যেমন— যদি গর্ভাবস্থায় কোনো কারণে আপনার সঙ্গীর মাসিকের রাস্তা দিয়ে ভারী রক্তপাত হয়ে থাকে যদি আপনার সঙ্গীর প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল নিচে থাকে—ডাক্তারি ভাষায় একে প্লাসেন্টা প্রিভিয়া বলে যদি গর্ভে একই সময়ে দুই বা তার বেশি সন্তান থাকে যদি পূর্বের প্রেগন্যান্সিতে সময়ের আগেই অপরিণত অবস্থায় বা প্রিম্যাচিউর সন্তান প্রসব হয়ে থাকে যদি আপনার সঙ্গীর জরায়ুমুখে (সারভিক্সে) কোনো দুর্বলতা কিংবা জটিলতা থাকে যদি আপনার সঙ্গীর পানি ভাঙ্গেএসব ক্ষেত্রে ডাক্তার আপনাকে সহবাস এড়িয়ে চলার পরামর্শ দিবেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম খেতে মনে করিয়ে দিনগর্ভের শিশুর ব্রেইন স্নায়ুতন্ত্র হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠার জন্য এ সপ্তাহ থেকে গর্ভবতী মায়ের নিয়মিত আয়রন–ফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খেতে হবে তবে আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেটের সাথে একই সময়ে ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া যাবে না কারণ তাতে আয়রনের কার্যকারিতা কমে যায়শরীরের নানান পরিবর্তন ও সারাদিনের ব্যস্ততার ভিড়ে হয়তো এসব প্রয়োজনীয় ওষুধ খেতে মনে নাও থাকতে পারে তাই আপনি মাঝে মাঝে খোঁজ নিতে পারেন যে দিনের ওষুধগুলো খাওয়া হয়েছে কি না কোনো বেলার ওষুধ আপনি এক গ্লাস পানিসহ এগিয়ে দিতে পারেনতৃতীয় চেকআপের প্রস্তুতি নিনশিশুর মায়ের তৃতীয় গর্ভকালীন চেকআপের সময় হয়ে এসেছে সেটার জন্য দুজনে মিলে প্রস্তুতি নিন কোনো প্রশ্ন মাথায় আসলে সেটা লিখে নিয়ে যান সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে এরপর ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার তারপর প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবেচেকআপের সময় শিশুর মা তার সাথে সমস্যার কথাগুলো ভালোভাবে বলতে পারছে কি না তা জেনে নিন যদি গত চেকআপগুলোর অভিজ্ঞতা ভালো না হয় তাহলে আপনারা ডাক্তার অথবা স্বাস্থ্যকেন্দ্র পরিবর্তনের কথা চিন্তা করতে পারেন সঙ্গীর সাথে বিস্তারিত আলোচনা করে দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিন পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম শুরু করে দিনযোনিপথের আশেপাশের মাংসপেশিগুলো শক্ত করার জন্য আপনি নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ বা কেগেল ব্যায়াম করতে পারেন এতে প্রসবের পর জটিলতার (যেমন হাঁচি কাশি ও হাসির সময়ে কয়েক ফোটা প্রস্রাব বেরিয়ে আসার) সম্ভাবনা কমতে পারে৩৪০ ক্যালোরি পরিমাণ বাড়তি খাবার খাবেনগর্ভাবস্থায় দুজনের পরিমাণে খাবার খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই মাঝের তিন মাসে সাধারণত দিনে প্রায় ৩৪০ ক্যালরি পরিমাণ অতিরিক্ত খাবার খাওয়াই যথেষ্ট গর্ভকালীন মাস অনুযায়ী খাবারের আদর্শ তালিকা পেতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানগর্ভের শিশুর ব্রেইন স্নায়ুতন্ত্র হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ যাতে স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠে সেজন্য আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান আপনার গর্ভের শিশু এখন প্রায় একটি আপেলের সমান লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় ৮৫ সেন্টিমিটার সমানছোট্ট শিশু পানি গিলে নিচ্ছেজরায়ুর ভেতরে পানির মতো এক ধরনের তরল পদার্থ দিয়ে ছোট্ট শিশুটি ঘেরা আছে ডাক্তারি ভাষায় এই তরল পদার্থকে বলা হয় অ্যামনিওটিক ফ্লুইড সেই অ্যামনিওটিক ফ্লুইড শিশু এখন মুখ দিয়ে অল্প অল্প করে গিলে নেয়শিশু এখন প্রস্রাব করেশুনতে অবাক লাগতে পারে তবে ছোট্ট শিশু এখন প্রস্রাব করে যে পানির মত তরল শিশু গিলে খায় কিডনি সেটা থেকে মূত্র বা প্রস্রাব তৈরি করে যে কিডনি নিয়ে শিশু জন্মাবে এই সপ্তাহে সেই কিডনি ভালোভাবে কাজ করতে শুরু করবেশিশুর লিভার পিত্তরস তৈরি শুরু করছেশিশুর শরীরের ভেতরের অঙ্গগুলো নানান ধরনের কাজ করা শুরু করে ফেলেছে এ সপ্তাহে শিশুর লিভার পিত্তরস তৈরি শুরু করবে পিত্তরস পরবর্তীতে শিশুর খাবার হজমে সাহায্য করবে শিশু জন্মের পর প্রথম পায়খানার রং গাড় সবুজ হয় এই পিত্তরসের কারণেইশিশুর হার্টবিট শুনতে পেতে পারেনআনন্দের বিষয় হলো ডাক্তার আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করার সময়ে আপনার শিশুর হার্টবিট শুনতে পাবেন সেই সময়ে পাশ থেকে আপনিও হয়তো ছোট্ট শিশুর হার্টবিট শুনতে পাবেন গর্ভাবস্থার এই পর্যায়ে এসে হয়তো আপনি আগের মতো শক্তি ফিরে পাচ্ছেন ক্লান্তি কমার সাথে সাথে আপনার ক্ষুধাও বাড়তে পারে সেক্ষেত্রে স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর নাস্তা বেছে নিতে চেষ্টা করবেন এটা হতে পারে আপনার প্রিয় কোনো ফল কয়েকটা বাদাম অথবা একটা সেদ্ধ ডিমস্বাস্থ্যকর অপশনগুলো হাতের নাগালে রাখার মাধ্যমে ক্ষুধা লাগলে ভাজাপোড়া ও বিস্কুটচানাচুরের মতো অস্বাস্থ্যকর অপশন এড়িয়ে চলা সহজ হবেপেলভিক ফ্লোর ব্যায়ামএই সময় থেকে আপনি পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম বা কেগেল ব্যায়াম শুরু করে দিতে পারেন সকল গর্ভবতী নারীর জন্য এই ব্যায়ামটা উপকারী নিয়মিত ব্যায়াম করলে প্রসবের পরে সহবাস বেশি উপভোগ্য হতে পারে এবং প্রসব পরবর্তী কিছু জটিলতা এড়ানো যেতে পারে যেমন হাঁচি কাশি ও হাসির সময়ে কয়েক ফোটা প্রস্রাব বেরিয়ে আসার সমস্যা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা কমতে পারেকেগেল ব্যায়াম করার জন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন— পায়খানার রাস্তা চাপ দিয়ে এমনভাবে বন্ধ করে রাখুন যেন পায়খানা আটকানোর চেষ্টা করছেন একই সাথে যোনিপথকে চাপ দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন প্রস্রাবের রাস্তাতেও এমনভাবে চাপ দিন যেন প্রস্রাব আটকানোর চেষ্টা করছেন প্রথম ১০ বার ব্যায়ামটা ধীরে ধীরে করবেন ১০ সেকেন্ড পর্যন্ত চাপ দিয়ে ধরে রাখুন এরপর ১০ বার ব্যায়ামটি দ্রুত করুন ওপরের পদ্ধতিতে দ্রুত চাপ প্রয়োগ করুন এবং ছেড়ে দিন এরকমভাবে ২০ বার চাপ দেওয়া এবং ছেড়ে দেওয়াকে এক সেট ব্যায়াম ধরা হয় চেষ্টা করুন দিনে এভাবে তিন সেট ব্যায়াম করতে মনে রাখার সুবিধার জন্য প্রতিবেলা খাওয়ার আগে এক সেট ব্যায়াম করতে পারেনস্তনের বোঁটা থেকে শালদুধ বের হওয়াএসময়ে আপনার স্তনের বোঁটা থেকে হলুদাভসাদা অথবা সোনালী রঙের দুধের মতো তরল বের হতে পারে এই তরল হলো কোলোস্ট্রাম বা শালদুধ আপনার গর্ভের শিশু জন্মের পর প্রথম দুধ হিসেবে এই শালদুধ পান করবে যা তাকে প্রয়োজনীয় নানান গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করবেগর্ভাবস্থায় শালদুধ নিঃসৃত হওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা এ নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই তবে শালদুধ যদি কোনো কারণে রক্তমিশ্রিত থাকে তাহলে সেটা গুরুতর কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে তাই এমন কিছু লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিনগর্ভাবস্থায় যোনিপথে ফাঙ্গাল ইনফেকশনএসময়ে আপনার যোনিপথে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে এটি অনেকের কাছে ঈস্ট ইনফেকশন নামেও পরিচিত এমন হলে অস্বাভাবিক ধরনের সাদা স্রাব হতে পারে যা দেখতে দই অথবা পনিরের মতো এবং চাকা চাকা হয়গর্ভাবস্থায় ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে ভয়ের কিছু নেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসা নিলে এটি সহজেই সেরে যায় তবে সব ধরনের অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয় তাই নিজে নিজে ঔষধ কিনে চিকিৎসা শুরু না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিনআপনার হয়তো আগের চেয়ে ক্ষুধা বেড়ে গিয়েছে কী খাবেন কতটুকু খাবেন—এসব প্রশ্ন মাথায় ঘোরাঘুরি করছে আপনজনদের মধ্যে অনেকেই হয়তো এসময়ে বেশি বেশি খেতে বা দুজনের পরিমাণে খাবার খেতে উপদেশ দিবেনতারা হয়তো ভালো উদ্দেশ্য নিয়েই এই পরামর্শ দেন তবে গর্ভাবস্থায় দুজনের পরিমাণে খাবার খাওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই বরং বেশি খাওয়ার ফলে ওজন অতিরিক্ত বাড়লে সেটি গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ ও প্রিএক্লাম্পসিয়ায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়গর্ভধারণের আগে ওজন স্বাভাবিক হলে গর্ভাবস্থার ৪ মাস থেকে ৬ মাসে প্রতিদিন ৩৪০ ক্যালরির কাছাকাছি পরিমাণ অতিরিক্ত খাবার খাওয়াই যথেষ্টগর্ভবতীর খাবারের তালিকা পেতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনসম্পর্কে টানাপোড়নগর্ভাবস্থায় মাথায় নানান ধরনের চিন্তাদুশ্চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকে আপনার ভেতরেবাইরে ঘটে যাওয়া অসংখ্য পরিবর্তনের কারণে আপনি মানসিকভাবে চাপে থাকতে পারেন চাপের প্রভাবে আপনাদের সম্পর্কে টানাপোড়েন সৃষ্টি হতে পারেআপনারা দুজনেই হয়তো আপনাদের ছোট্ট সংসারে নতুন অতিথিকে স্বাগত জানাতে নিজেদের প্রস্তুত করছেন কিন্তু এই কাজটা সবসময় সহজ হয় নাভবিষ্যৎ জীবনে কী কী পরিবর্তন আসবে পরিবারে নতুন অতিথি যোগ হওয়ার সাথে সাথে আপনাদের মধ্যকার সম্পর্ক বদলে যাবে কি না—এমন চিন্তাগুলো হয়তো দুজনকেই বেশ ভাবাচ্ছে এই অনুভূতিগুলো নিয়ে দুজনে খোলাখুলিভাবে কথা বলুন এতে আপনাদের মধ্যে সৃষ্টি হওয়া দূরত্ব কমে আসবে দুজনের বোঝাপড়াও ভালো হবেঅন্যান্য লক্ষণঃআগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা একে লিগামেন্টের ব্যথা বলা হয় মাথা ব্যথা নাক থেকে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা স্তনে ব্যথা পা কামড়ানো বেশি গরম লাগা মাথা ঘুরানো হাত–পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন— বমি বমি ভাব অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র ঘ্রাণশক্তি ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এ সময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে সঙ্গীর কথাগুলো মনোযোগ দিয়ে বোঝার চেষ্টা করুনএসময়ে আপনার সঙ্গীর মনে অনেক কল্পনা ইচ্ছা কিংবা চিন্তার সৃষ্টি হতে পারে চেষ্টা করুন মনোযোগী শ্রোতা হয়ে তার কথাগুলো শোনার এতে তার মন কিছুটা হালকা হবে দুজনের মতের অমিল হলে মাথা ঠাণ্ডা রেখে ধৈর্যের সাথে ব্যাপারটা মীমাংসা করার চেষ্টা করুন যেন আপনাদের সম্পর্কে টানাপোড়ন সৃষ্টি না হয়এর পাশাপাশি আপনার সঙ্গীর ছোটোখাটো যেকোনো সমস্যাকে গুরুত্ব দিন প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিননিজেদের জন্য সময় বের করুনআপনাদের পরিবার আর কয়েক মাস পর আর ছোটো থাকবে না নতুন অতিথি এসে পরিবারে যুক্ত হবে তাই এই সময়টা যতটা সম্ভব উপভোগ করার চেষ্টা করুন শিশু জন্মের পর থেকে আপনার সঙ্গী হয়তো আপনার সাথে একান্তে সময় কাটানোর ফুরসত পাবেন না হয়তো দুজনের ব্যস্ততাই অনেক গুণে বেড়ে যাবে তাই এই সময়টাকে পুরোপুরি কাজে লাগান দুজনের ভালো লাগে এমন কিছুতে একসাথে সময় কাটানপেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম করতে উৎসাহ দিনগর্ভবতী নারীদের নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয় এই ব্যায়াম করতে মাত্র কয়েক মিনিট সময় লাগেপ্রসবের পর হাঁচি কাশি ও হাসির সময়ে প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করার জন্য পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম অনেকখানি সাহায্য করতে পারে নিয়মিত এই ব্যায়ামটা করলে প্রসবের পর সহবাস বেশি উপভোগ্য হতে পারেসাধারণত সারাদিনে মোট তিন সেট পেলভিক ফ্লোর ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয় আপনি মাঝে মাঝে এই ব্যায়াম করার কথা মনে করিয়ে দিতে পারেন যদি শিশুর মা তিনবেলা খাওয়ার আগে এই ব্যায়াম করার সিদ্ধান্ত নেন তাহলে তখন মনে করিয়ে দিতে পারেনস্তনের বোঁটা দিয়ে শালদুধ বের হওয়া স্বাভাবিকএসময়ে আপনার সঙ্গীর স্তনের বোঁটা থেকে দুধের মতো হলুদাভসাদা অথবা সোনালী রঙের আঠালো তরল বের হতে পারে আপনি এমন কিছু খেয়াল করলে দুশ্চিন্তায় পড়ে যাবেন না গর্ভাবস্থায় এমন হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা এতে চিন্তার কিছু নেই রেটিনয়েডযুক্ত প্রসাধনী এড়িয়ে চলুনগর্ভাবস্থায় ত্বকে রেটিনয়েড ব্যবহার করলে তাতে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই আপনার ত্বকের যত্নে যেসব প্রসাধনী (যেমন ক্রিম জেল ও সিরাম) ব্যবহার করেন সেগুলোতে রেটিনয়েড জাতীয় উপাদান আছে কি না খেয়াল করুন থাকলে আজ থেকেই সেটা ব্যবহার বন্ধ করে বিকল্প প্রসাধনী বেছে নিনব্যায়াম করা চালিয়ে যাননিয়মিত ব্যায়াম করা চালিয়ে যান পরিবারের অন্য কোনো সদস্য অথবা বন্ধুদের সাথে একত্রে ব্যায়াম করতে পারেন এতে সবাই বিষয়টা উপভোগ করতে পারবেন স্বাস্থ্যেরও উপকার হবে সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘন্টা মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম করার চেষ্টা করবেনচেকআপ করিয়ে ফেলুনএ মাসের গর্ভকালীন চেকআপ করিয়েছেন কি না করিয়ে থাকলে সেটার জন্য প্রস্তুতি নিয়ে চেকআপ করিয়ে আসুন কোনো প্রশ্ন মাথায় আসলে সেটা লিখে নিয়ে যান এতে চেকআপের দিন তাড়াহুড়ায় থাকলেও প্রশ্ন ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে নাআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানগর্ভের শিশুর ব্রেইন স্নায়ুতন্ত্র হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ যাতে স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠে সেজন্য আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান আপনার গর্ভের শিশু এ সপ্তাহে প্রায় ১০১ সেন্টিমিটার লম্বা গিয়েছে—প্রায় একটি বেদানার সমান এই সপ্তাহে তার ওজন প্রায় ৭০ গ্রাম হয়ে গিয়েছেত্বকে লোমের আবরণ তৈরি হচ্ছেছোট্ট শিশুর শরীরে ইতোমধ্যেই এক ধরনের নরম তুলতুলে লোমের আবরণ তৈরি হতে শুরু করেছে[৫][৬] একে ডাক্তারি ভাষায় ল্যানুগো বলে[৭] জন্মের আগে আগে এই নরম মসৃণ লোম পড়ে যায়[৮] পরবর্তীতে নতুন লোম গজায় যা আগের চেয়ে খানিকটা কম নরম হয়শিশুর চোখের পাপড়ি তৈরি হচ্ছেছোট্ট সোনামণির চোখের পাপড়ি ও ভ্রু তৈরি হতে শুরু করেছে দিনে দিনে শিশুর চোখ আরও বিকশিত হচ্ছেশিশুর দাঁত তৈরি হচ্ছেঅবাক করা বিষয় হলো গর্ভাবস্থাতেই আপনার শিশুর স্থায়ী দাঁত অর্থাৎ দুধ দাঁত পড়ে যাওয়ার পর যে নতুন দাঁত ওঠে—সেগুলোও তৈরি হতে থাকে[১৩] তবে এই দাঁত মাড়ির ভেতরে থেকে যায় পরবর্তীতে নির্দিষ্ট সময়ে এই দাঁত বাইরে বেরিয়ে আসে আপনার ত্বকে এখন বেশ কিছু পরিবর্তন লক্ষ করতে পারেন গর্ভাবস্থার স্বাভাবিক পরিবর্তনের কারণে এমনটা দেখা দিতে পারেত্বকে দাগ পড়াআপনার ত্বকে গাঢ় বর্ণের ছোপের মতো দাগ লক্ষ করতে পারেন গালে কপালে নাকে থুতনিতে বা চোয়ালের দিকে গাঢ় ছোপ ছোপ হতে পারে তাছাড়াও ঘাড়ে স্তনের বোঁটায় উরুর ভেতরের দিকে যৌনাঙ্গের আশেপাশে গাঢ় দাগ দেখা দিতে পারে গর্ভাবস্থায় অনেকের ক্ষেত্রেই এমনটা দেখা দেয়এগুলো নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই প্রসবের পর এসব দাগ সাধারণত নিজে থেকেই ধীরে ধীরে হালকা হয়ে যায়চুলকানিগর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে চুলকানি হতে পারে কিছু সহজ টিপস মেনে চুলকানি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন যেমন জামাকাপড়ের সাথে ত্বকের ঘষা লাগলে চুলকানি বেড়ে যেতে পারে এজন্য সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক বেছে নিন সুতি কাপড়ের ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে তাই আপনার বেশি আরাম লাগতে পারেতবে আপনার যদি হাত ও পায়ের তালু চুলকায় এবং রাতে চুলকানি বেড়ে যায় তাহলে সেটা গর্ভাবস্থার বিশেষ লিভারের রোগের লক্ষণ হতে পারে তাই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিনরেটিনয়েডযুক্ত প্রসাধনী এড়িয়ে চলাগর্ভাবস্থায় রেটিনয়েড সমৃদ্ধ ক্রিম জেল বা অন্য কোনো প্রসাধনী এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়কারণ ত্বকে রেটিনয়েড ব্যবহার করলে তাতে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার একটা সম্ভাবনা থাকেআপনার ত্বকের যত্নে যেসব প্রসাধনী ব্যবহার করেন সেগুলোতে রেটিনয়েড জাতীয় উপাদান আছে কি না খেয়াল করুন এবং থাকলে বিকল্প প্রসাধনী বেছে নিনতিলে পরিবর্তন হওয়াগর্ভাবস্থায় ত্বকে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয় এর মধ্যে অনেকগুলোই গর্ভাবস্থার জন্য স্বাভাবিক তবে কিছু পরিবর্তনের বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে যেমন আপনার যদি আগে থেকে কোনো তিল থাকে এবং সেটার আকারে বড় হতে থাকে আকৃতিতে পরিবর্তন আসে কিংবা রঙ বদলাতে থাকে তাহলে চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে হবেএটা ত্বকের ক্যান্সারের মত গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারেশরীরচর্চা বাড়িয়ে দেওয়াএই মাসে আপনি হয়তো আগের চেয়ে বেশি চনমনে অনুভব করছেন এই শক্তিকে কাজে লাগান ব্যায়ামের পরিমাণ যতখানি সম্ভব বাড়িয়ে দিন ব্যায়াম আপনাকে ও গর্ভের শিশুকে সুস্থ রাখতে সাহায্য করবে আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাবে এবং সিজারের সম্ভাবনাও কমাবেবিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভবতী নারীদের সপ্তাহে অন্তত আড়াই ঘন্টা মাঝারি তীব্রতার অ্যারোবিক ব্যায়াম করার সুপারিশ করে এমন ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে দ্রুত হাঁটা ও সাইকেল চালানো এজন্য দিনে অন্তত ৩০ মিনিট করে সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন এই ধরনের ব্যায়াম করবেন তবে ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলে অল্প অল্প করে শুরু করবেনঅন্যান্য লক্ষণঃআপনার এ সপ্তাহে আগের সপ্তাহগুলোর মতো আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা একে লিগামেন্টের ব্যথা বলা হয় মাথা ব্যথা নাক থেকে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা স্তনে ব্যথা পা কামড়ানো বেশি গরম লাগা মাথা ঘুরানো হাত–পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন— বমি বমি ভাব অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র ঘ্রাণশক্তি ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এ সময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে চুলকানি কমাতে ছোট্ট সাহায্য করুনএসময়ে আপনার সঙ্গীর শরীরের বিভিন্ন স্থানে চুলকানির সমস্যা হতে পারে সেক্ষেত্রে আপনি তাকে একটি ছোট্ট সাহায্য করতে পারেন আপনি কয়েক টুকরো বরফ তোয়ালে কিংবা গামছা দিয়ে পেঁচিয়ে শিশুর মাকে এগিয়ে দিতে পারেন চুলকানির স্থানে ঠাণ্ডা কিছু ধরে লাগলে তিনি কিছুটা আরাম পেতে পারেনশিশুর মাকে বাহ্যিক পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করুনএসময়ে আপনার সঙ্গীর ত্বকে কিছু দাগ পড়তে পারে মুখে মেছতার মতো বাদামি রঙের ছোপ ছোপ দাগ দেখা যেতে পারে গর্ভাবস্থায় এসব সাময়িক পরিবর্তন আসা স্বাভাবিক শিশুর মা আয়নায় নিজের চেহারায় এসব পরিবর্তন দেখে বিচলিত হয়ে পড়তে পারেনতিনি যখন আপনার সাথে তার মনের অবস্থা ভাগাভাগি করে নিবেন তখন তাকে বোঝানোর চেষ্টা করুন যে এসব পরিবর্তন খুব স্বাভাবিক সহানুভূতি দিয়ে তাকে এসবের সাথে মানিয়ে নিতে সাহায্য করুনএকসাথে ব্যায়াম করুনযারা গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করেন তাদের সিজারের প্রয়োজন কম হয় এবং নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বেড়ে যায় এ ছাড়া সময়ের আগে সন্তান প্রসব হওয়া ও শিশুর ওজন কম হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে নিয়মিত ব্যায়াম শিশুর মায়ের মনমেজাজ ফুরফুরে রাখতে ভালো ঘুম হতে ও সবমিলিয়ে সুস্থ থাকতে সাহায্য করবেগর্ভাবস্থায় সপ্তাহে অন্তত ২৫ ঘন্টা মাঝারি তীব্রতার অ্যারোবিক ব্যায়াম করা প্রয়োজন তাই সঙ্গীকে নিয়মিত ব্যায়াম করতে উৎসাহ দিন সম্ভব হলে দুজনে একসাথে ব্যায়াম করুন একসাথে দ্রুত হাঁটতে বের হতে পারেন এতে একত্রে কিছু ভালো সময় কাটানো হবে আপনার সঙ্গীও হয়তো তখন ব্যায়াম করতে বেশি আগ্রহী হবেনতুন করে ব্যায়াম শুরু করলে একটু চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে সেক্ষেত্রে ধীরে ধীরে সহনশীলতা বাড়াতে চেষ্টা করুনগর্ভকালীন চেকআপের সময়সূচী জেনে রাখুনআপনি কি গর্ভকালীন চেকআপের সময়সূচী জানেন সময়সূচী জানা থাকলে চেকআপের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট নেওয়া টাকাপয়সা গুছিয়ে রাখা যাতায়াতের ব্যবস্থা করা ও প্রয়োজনে কর্মক্ষেত্র থেকে কয়েক ঘন্টার জন্য ছুটি নেওয়া—এসব আগে থেকেই পরিকল্পনা করে রাখতে পারবেনসবকিছু ঠিকঠাক থাকলে গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত শিশুর মাকে মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে এরপর ৩৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার তারপর প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবে রোদ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখুনরোদে থাকা অতিবেগুনী রশ্মির সংস্পর্শে ত্বক পুড়ে যায় গর্ভাবস্থায় ত্বক নাজুক থাকে তাই সূর্যের আলোয় বের হলে নিজেকে সুরক্ষিত রাখুন বাইরে বের হওয়ার সময়ে শরীরের উন্মুক্ত স্থানে (যেমন মুখে হাতে ও পায়ে) কমপক্ষে SPF 30 বিশিষ্ট সানস্ক্রিন ব্যবহার করুনগর্ভের শিশুকে ইনফেকশন থেকে দূরে রাখুনযেসব ইনফেকশন অন্য সময়ে স্বাস্থ্যের ওপর তেমন একটা প্রভাব ফেলে না গর্ভাবস্থায় সেগুলো গুরুতর হতে পারে তাই গর্ভের শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে বাড়ির সবাই মিলে বারবার সাবানপানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করবেন অসুস্থ ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবেন একেকজনের প্লেট গ্লাস ও বোতল আলাদা রাখবেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানগর্ভের শিশুর সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করতে আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু প্রায় ১১৬ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে তার ওজন প্রায় ১০০ গ্রাম সে এখন প্রায় একটি কামরাঙ্গার সমান লম্বাছোট্ট শিশু চোখ নাড়াতে পারেআপনার ছোট্ট শিশু এখন তার চোখ ধীরে ধীরে এদিকওদিক নাড়াতে পারে তবে তার চোখ এখনো বন্ধ অবস্থায় আছে এসময়ে চোখের পাতা তার চোখ দুটোকে ঢেকে রেখেছেশিশু মুখ হা করতে শিখেছেশিশুর মুখমণ্ডলের পেশিগুলোর কাজ করার ক্ষমতা ধীরে ধীরে বাড়ছে এখন সে মুখ হা করতে পারে এবং মুখ বন্ধ করতে পারেশিশুর কানগুলো বিকশিত হচ্ছেশিশুর কান দুটো ধীরে ধীরে মাথার দুপাশে জায়গামত বসছে এ সপ্তাহে শিশুর কানে শোনার ক্ষমতা বিকশিত হচ্ছে সময়ের সাথে সাথে গর্ভের শিশু বাইরের আওয়াজ কানে শুনতে শুরু করবেশিশুর নার্ভাস সিস্টেম পরিণত হচ্ছেছোট্ট শিশুর স্নায়ুতন্ত্র ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে ফলে ব্রেইনের সাথে পুরো শরীরের সংযোগ আরও নিখুঁত হচ্ছে যার সাহায্যে আপনার শিশু আরও ভালোভাবে হাত–পা নাড়াতে শিখছেপায়ের আঙ্গুলের নখ তৈরি হচ্ছেছোট্ট শিশুর পায়ের আঙুলগুলোতে ছোট্ট ছোট্ট নখ তৈরি হতে শুরু করেছে হাতের আঙ্গুলের নখ আগেই তৈরি হওয়া শুরু হয়ে গেছে শিশুর হাতপায়ের আঙুলগুলো প্রথমে একসাথে জোড়া লাগানো অবস্থায় ছিল সেগুলো আগেই আলাদা হয়ে গেছে—এখন বেশ স্পষ্ট বোঝা যায় এ সপ্তাহ থেকে আপনি হয়তো গর্ভের ছোট্টমণির নড়াচড়া অনুভব করতে পারবেনগর্ভের শিশুর নড়াচড়াশিশু নড়াচড়া করতে শুরু করলে আপনার পেটের ভেতরে হালকা ঝাঁকুনি থেকে শুরু করে বুদবুদের মতো কিছু একটা নড়াচড়া করছে কিছু একটা সরে যাচ্ছে হালকাভাবে ঝাপটা–ঝাপটি করছে কিংবা পেটের ভেতরে আলতোভাবে ঘুরছে—এমন যেকোনো অনুভূতি হতে পারেআপনি ১৬তম সপ্তাহ–২৪তম সপ্তাহের মধ্যে প্রথমবারের মতো শিশুর নড়াচড়া টের পেতে শুরু করবেন তবে এটা আপনার প্রথম গর্ভধারণ হলে ২০তম সপ্তাহ পার হওয়ার আগে গর্ভের শিশুর নড়াচড়া নাও বুঝতে পারেন এমনকি কারও কারও ক্ষেত্রে প্রথমবার নড়াচড়া বুঝতে গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পর আরও কয়েক সপ্তাহ পার হয়ে যেতে পারেকিন্তু যদি গর্ভধারণের ২৪তম সপ্তাহের মধ্যেও শিশুর কোনো ধরনের নড়াচড়া অনুভব না করেন তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবেনরোদ থেকে সুরক্ষাআপনি হয়তো জেনে থাকবেন যে সূর্যের তীব্র আলোয় ত্বক পুড়ে যায় তবে শুনে অবাক হতে পারেন যে আকাশ মেঘলা থাকলেও এমন হতে পারে গর্ভকালীন সময়ে সাধারণত ত্বক বেশি সংবেদনশীল থাকে তাই সহজেই পুড়ে যেতে পারে আবার রোদে থাকা অতিবেগুনী রশ্মির প্রভাবে মুখে গাঢ় ছোপ ছোপের মত দাগ বা মেছতা হতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় রোদ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা প্রয়োজনবাইরে বের হওয়ার ১৫ মিনিট আগে মুখ গলা হাত পা ও শরীরের উন্মুক্ত স্থানে কমপক্ষে SPF 30 মাত্রার সানস্ক্রিন ব্যবহার করুনকেনার সময়ে সানস্ক্রিনটি UVA ও UVB দুটোর বিরুদ্ধেই সুরক্ষা দেয় কি না সেটা দেখে নিনসানস্ক্রিন লাগানোর সময়ে বেশ ভালো পরিমাণে সানস্ক্রিন নিন যাতে ত্বকের ওপরে সানস্ক্রিনের একটি পুরু আস্তরণ সৃষ্টি হয় সেই সাথে রোদ থেকে সুরক্ষিত থাকতে ছাতা ব্যবহার করতে পারেন বাইরে যখন প্রখর রোদ থাকে তখন গাছতলার মতো ছায়াযুক্ত জায়গায় দাঁড়ানপিঠ ও কোমর ব্যথাবাড়ন্ত পেটের ভার আর গর্ভকালীন হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে আপনার পিঠের নিচের দিকে ও কোমরে চাপ পড়তে পারে এর সমাধানে ছোটো ছোটো কিছু টিপস মেনে চলতে পারেন যেমন— বসার সময়ে পিঠ সোজা রেখে বসবেন হিল জুতা না পরে ফ্ল্যাট বা সমতল জুতা পরুন তাতে ওজন সমানভাবে বণ্টন হবে বিছানায় এমন জাজিম তোষক বা ম্যাট্রেস ব্যবহার করুন যা সঠিকভাবে শরীরের ভার বহন করতে পারে প্রয়োজনে নরম জাজিমের নিচে একটি হার্ডবোর্ড রেখে সেটাকে কিছুটা শক্ত করার ব্যবস্থা করতে পারেন ব্যথা সারানোর ব্যায়াম এবং আরও কিছু সহজ টিপস জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনইনফেকশন থেকে সুরক্ষাএমন কিছু ইনফেকশন রয়েছে যেগুলো আপনার গর্ভের ছোট্টমণির জন্য মারাত্মক ক্ষতির কারণ হতে পারে এসব জীবাণুর সংস্পর্শ থেকে নিজেকে সুরক্ষিত রাখার একটা কার্যকর উপায় হলো নিয়মিত ও নিয়মমতো হাত ধোয়া আপনি আপনার সঙ্গী ও বাড়ির সবাই মিলে বারবার সাবানপানি দিয়ে হাত ধোয়ার অভ্যাস করবেন হ্যান্ড স্যানিটাইজার কিনে রাখতে পারেন যাতে হাত ধোওয়ার ব্যবস্থা না থাকলে অন্তত এটা দিয়ে হাত পরিষ্কার করে নিতে পারেনইনফেকশন এড়াতে আরেকটা বিষয়ে খেয়াল রাখবেন সেটা হলো অন্য কারও সাথে খাবার পানি ও কোমল পানীয় শেয়ার করবেন না অর্থাৎ একই প্লেট গ্লাস বা বোতল থেকে এসব খাবেন না অসুস্থ ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলুনমনে রাখবেন অন্য সময়ে সাধারণ হলেও অনেক ইনফেকশন গর্ভাবস্থায় মারাত্মক রূপ নিয়ে গর্ভের শিশুর ক্ষতি করতে পারে তাই আপনার সঙ্গী অসুস্থ হলে তাকেও সুস্থ হওয়ার আগ পর্যন্ত অন্য ঘরে থাকার অনুরোধ করতে দ্বিধাবোধ করবেন নাঅন্যান্য লক্ষণগর্ভকালীন সময়টা কারও জন্য সহজ নয় তাই যেকোনো সময়ে আপনার মানসিক কিংবা শারীরিকভাবে একটু বেশি খারাপ লাগতে পারে সমস্যা বেশি মনে হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেএসময়টাতে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে এটি গর্ভবতীদের খুব কমন একটি সমস্যা এক্ষেত্রে আপনার পায়খানা করতে কষ্ট হওয়ার পাশাপাশি পেট ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা ও বমি বমি ভাব হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য ছাড়াও এই সপ্তাহে আগের মতো আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা একে লিগামেন্টের ব্যথা বলা হয় মাথা ব্যথা নাক থেকে রক্ত পড়া বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা স্তনে ব্যথা পা কামড়ানো বেশি গরম লাগা মাথা ঘুরানো হাত–পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন— বমি বমি ভাব অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র ঘ্রাণশক্তি ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এ সময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে বিছানায় শক্ত তোষক ব্যবহার করুনএসময়ে শিশুর মায়ের পিঠ ও কোমরে ব্যথা হতে পারে সমস্যা সমাধানে আপনাদের বিছানায় শরীরের ভার সঠিকভাবে বহন করে এমন জাজিম তোষক অথবা ম্যাট্রেস ব্যবহার করতে পারেন যদি এই মুহূর্তে নতুন ম্যাট্রেস কিনতে অসুবিধা হয় তাহলে নরম জাজিম বা তোষকের নিচে একটা হার্ডবোর্ড রেখে সেটাকে কিছুটা শক্ত করার ব্যবস্থা করতে পারেনঅসুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে দূরে থাকুনগর্ভাবস্থায় কিছু ইনফেকশন শিশুর মা ও ছোট্টমণির জন্য গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে এমনকি এসময়ে ফ্লু এর মতো সচরাচর দেখা রোগও মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে এসব জীবাণু ত্বকের সংস্পর্শ হাঁচিকাশি এমনকি বাতাসের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তে পারে তাই গর্ভাবস্থায় অসুস্থ ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলা খুব গুরুত্বপূর্ণবাড়ির কোনো সদস্যের মাধ্যমে অসুস্থ ব্যক্তির কাছ থেকে আসা জীবাণু ঘরে প্রবেশ করতে পারে তাই আপনিসহ বাড়ির সব সদস্যকে এই ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে এবং অসুস্থ ব্যক্তিদের কাছ থেকে আপাতত দূরে থাকতে হবেবাসায় কারও অসুস্থতার লক্ষণ দেখা দিলে তাকে শিশুর মায়ের থেকে দূরে আলাদা একটা ঘরে থাকার ব্যবস্থা করুন বারবার সাবান ও পানি দিয়ে হাত ধুয়ে ফেলুন এবং প্রয়োজনে মাস্ক ব্যবহার করুন মোট কথা শিশুর মাকে ও গর্ভের শিশুকে সুরক্ষিত রাখার জন্য সবাই সচেতন থাকুনওষুধ নিয়ে সতর্ক থাকুনকিছু ওষুধ গর্ভাবস্থায় সেবনের জন্য নিরাপদ নয় তাই ফার্মেসি থেকে নিজেরা ওষুধ কিনে খাওয়ার ব্যাপারে খুব সতর্ক থাকবেন শিশুর মায়ের জন্য যেকোনো ওষুধ কেনার আগে সাথে থাকা নির্দেশিকা থেকে সেটা গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য নিরাপদ কি না তা দেখে নিবেনআগে থেকে কোনো ঔষধ সেবন করতে থাকলে ডাক্তারকে জানাতে মনে করিয়ে দিনশিশুর মা যদি গর্ভাবস্থার আগে থেকে কোনো ঔষধ সেবন করে আসতে থাকেন তাহলে তা ডাক্তারকে জানাতে মনে করিয়ে দিতে পারেন এতে করে গর্ভকালীন সময়ে সেসব ঔষধ সেবন চালিয়ে যাওয়া যাবে কি না সেই বিষয়ে ডাক্তার বিস্তারিত ধারণা দিতে পারবেনঅনেকক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের কথা বিবেচনা করে ডাক্তার কিছু ঔষধ বাদ দিয়ে দিতে পারেন কিংবা বদলে দিতে পারেন তবে এই বিষয়ে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন অ্যানোমালি স্ক্যানের প্রস্তুতি নিনডাক্তার আপনাকে শীঘ্রই একটি বিশেষ আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিবেন যার নাম অ্যানোমালি স্ক্যান এর সাহায্যে শিশুর জন্মগত ত্রুটি খুঁজে দেখা হয় শিশু ছেলে না মেয়ে তাও এই পরীক্ষায় জানা যেতে পারেনিয়মিত মাছ খানগর্ভাবস্থায় মা নিয়মিত মাছ খেলে শিশুর ব্রেইনের বিকাশ ভালো হয় আইকিউ বাড়ে কথাবার্তায় পটু হয় তাই সপ্তাহে অন্তত ২৮০ গ্রামের মতো মাছ খাওয়ার চেষ্টা করবেন এর মধ্যে অর্ধেক পরিমাণ তৈলাক্ত মাছ খাবেনযেমন ইলিশ চাপিলা ও পুঁটি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়েও এভাবে মাছ খাওয়া চালিয়ে যাবেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানগর্ভের শিশুর সুস্থ বিকাশ নিশ্চিত করতে আগের সপ্তাহগুলোর মতো এই সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু প্রায় ১২ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে তার ওজন এখন প্রায় ১৫০ গ্রাম সে এখন লম্বায় প্রায় একটি সবরি কলার সমানছোট্ট শিশুর আঙ্গুলের ছাপ তৈরি হচ্ছেশিশুর হাতপায়ে আঙুলের চামড়ায় সূক্ষ্ম রেখা বা দাগ তৈরি হচ্ছে এই রেখাগুলোকে আমরা আঙুলের ছাপ বলে চিনি এই সপ্তাহে তার হাতের আঙ্গুলের ছাপের একটা প্যাটার্ন তৈরি হয়ে যাবেপ্রতিটি মানুষের আঙুলের ছাপ পুরোপুরি আলাদা হয় তাই আপনার শিশুর হাতেপায়ের আঙ্গুলের এই রেখাগুলো একদম স্বতন্ত্র ও নিজস্ব এমনকি গর্ভে যমজ শিশু থাকলে তাদের দুইজনের আঙ্গুলের ছাপও একটি অন্যটি থেকে আলাদা হবেশিশু এখন মুখের কাছে হাত নিতে পারেছোট্ট শিশু এখন হাতটা মুখের কাছে নিতে পারে এসময়ে তার হাতপায়ের আঙুলে ছোটো ছোটো নখ তৈরি হচ্ছেপাশাপাশি সে এখন নানান ধরনের মুখভঙ্গি করতে শিখছে কখনো সে মুখ খুলছে কিংবা কখনো হাই তোলার মতো করছেশিশুর হার্ট খুব দ্রুত স্পন্দিত হচ্ছেআপনার গর্ভের শিশুর ছোট্ট হার্ট মিনিটে প্রায় ১৫০ বার করে স্পন্দিত হচ্ছে অর্থাৎ শিশুর হার্টবিট আপনার হার্টবিটের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ গতিতে চলছে সময়ের সাথে সাথে এই গতিটা কিছুটা কমে আসবে চতুর্থ চেকআপআপনার চতুর্থ গর্ভকালীন চেকআপের সময় হয়ে এসেছে সেটার জন্য প্রস্তুতি নিন কোনো প্রশ্ন মাথায় আসলে তা লিখে নিয়ে যান এতে চেকআপের দিন তাড়াহুড়ায় থাকলেও প্রশ্ন ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে নানিয়মিত চেকআপে যাওয়া আপনার ও গর্ভের শিশুর সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চেকআপে কোনো সমস্যা ধরা পড়লে দ্রুত পরীক্ষানিরীক্ষা করে সেটার চিকিৎসা শুরু করা যাবে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে এরপর ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার তারপর প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবেবাড়ন্ত পেটের যত্নগর্ভের ভেতরে আপনার শিশু বেশ দ্রুত গতিতে বড় হচ্ছে এরই মধ্যে আপনার পেটের আকার অনেকটা বড় হয়ে গিয়েছে বাড়ন্ত জরায়ু বড় হয়ে তলপেটের ওপরে উঠে আসা শুরু করেছে ফলে আপনার গর্ভধারণের ব্যাপারটা আরও অনেক স্পষ্ট হয়ে উঠবেএ সপ্তাহে আপনার বাড়ন্ত পেটের যত্নআত্তি নেওয়া বাড়িয়ে দিন পেটে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর সময়ে পেটের ওপর আলতো করে হাত বুলাতে পারেন বাড়ন্ত পেটের ভেতরে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে থাকা ছোট্টমণির সাথে কথা বলতে পারেন তাকে গান গেয়ে শোনাতে পারেন আপনার কথা শুনে কিংবা পেটের ওপরে আপনার হাতের স্পর্শ পেয়ে সে একটুখানি নড়াচড়া করে উঠতে পারেটিডি টিকা নেওয়াগর্ভাবস্থায় সাধারণত ৪ থেকে ৮ মাসের মধ্যে ২ ডোজ টিডি টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় টিডি টিকা আপনাকে ও আপনার শিশুকে টিটেনাস বা ধনুষ্টংকারের মতো মারাত্মক রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে সেই সাথে ডিপথেরিয়া রোগ প্রতিরোধেও সহায়তা করবেগর্ভাবস্থায় টিডি টিকা নেওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদ সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আপনি বিনামূল্যে এই টিকা নিতে পারবেন তবে আপনার ১৫ বছর বয়সের পর যদি টিটেনাস টিকার ৫টি ডোজ নেওয়া থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় সাধারণত আবার টিটেনাস টিকা নেওয়ার প্রয়োজন হয় না আপনার এই টিকা নিতে হবে কি না এবং নিলে কয় ডোজ নিতে হবে তা নিয়ে আপনার চিকিৎসকের সাথে আলাপ করে নিনগর্ভাবস্থার বিশেষ আলট্রাসনোগ্রাফি অ্যানোমালি স্ক্যানআপনাকে গর্ভাবস্থার ১৮–২২তম সপ্তাহের মধ্যে একটি আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হবে এর নাম অ্যানোমালি স্ক্যান যার সাহায্যে শিশুর জন্মগত ত্রুটি খুঁজে বের করা যেতে পারে ফলে অনেক ক্ষেত্রে আগে থেকে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া যায় শিশুর জন্মপরবর্তী করণীয় সম্পর্কে আগেভাগে পরিকল্পনা করে রাখা যায় এর পাশাপাশি শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা এবং শিশু ছেলে না কি মেয়ে—এই সংক্রান্ত তথ্যও জানা সম্ভব হয় এই স্ক্যান থেকেএই পরীক্ষা করার সময় গর্ভের শিশুকে ভালোভাবে দেখতে ডাক্তার আপনার পেটে প্রোব দিয়ে আলতো করে চাপ দিবেন এতে পেটে কিছুটা অস্বস্তি লাগতে পারে কিন্তু সাধারণত কোনো ব্যথা লাগে না কখন এই পরীক্ষা করালে ভালো হবে তা নিয়ে ডাক্তারের সাথে আলাপ করে পরীক্ষার ব্যবস্থা করে ফেলুনস্ক্যান করানোর আগে এটা নিয়ে মনে কোনো প্রশ্ন থাকলে সেটাও ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে জেনে নিন প্রস্তুতি ও ফলাফল সম্পর্কে জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনঅন্যান্য লক্ষণবাড়ন্ত পেটের জন্য এই সময়ে আপনার পেট ব্যথার সমস্যা হতে পারে সাধারণত বিশ্রাম নিলে এই ব্যথা কমে যায় বিশ্রামের পরেও ব্যথা না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নিনএ সপ্তাহেও আগের সপ্তাহের মতো আপনার যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— ক্লান্তি দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়া মাথা ব্যথা নাক থেকে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা ও কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা স্তনে ব্যথা পা কামড়ানো বেশি গরম লাগা মাথা ঘুরানো হাত–পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন যোনিপথে ইনফেকশন মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন— বমি বমি ভাব অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র ঘ্রাণশক্তি ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে অ্যানোমালি স্ক্যান সম্পর্কে জানুনগর্ভাবস্থার ১৮–২২তম সপ্তাহের মধ্যে আপনার সঙ্গীর একটি আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করা হয় এর নাম অ্যানোমালি স্ক্যান শিশুর কোন জন্মগত ত্রুটি থাকলে এই পরীক্ষায় তা খুঁজে বের করা যেতে পারে পাশাপাশি শিশুর স্বাভাবিক বেড়ে ওঠা এবং শিশু ছেলে না কি মেয়ে—এসবও জানা যায়শীঘ্রই এই পরীক্ষাটা করাতে হবে যেহেতু শিশুর বেড়ে ওঠা নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যাবে এই পরীক্ষার সময় আপনি সাথে থাকার চেষ্টা করুনগর্ভের শিশু ছেলে না মেয়ে জানতে চানঅনেক দম্পতি তাদের সন্তান ছেলে হবে না মেয়ে সেটা জানতে মুখিয়ে থাকেন আবার কেউ কেউ আগে থেকে এই প্রশ্নের উত্তর জেনে ছোট্টমণিকে স্বাগত জানানোর রোমাঞ্চ ও চমক নষ্ট করার বিপক্ষে তাই আপনি ও আপনার সঙ্গী স্ক্যানের ফলাফল থেকে গর্ভের শিশু ছেলে না মেয়ে—এই প্রশ্নের উত্তর জানতে চান কি না সেটা আগে থেকেই ঠিক করে নিনস্ক্যান করানোর আগে আপনাদের সিদ্ধান্ত ডাক্তারকে জানিয়ে রাখুন এতে তিনি আপনাদের সিদ্ধান্ত মাথায় রেখে সঠিক রিপোর্ট তৈরি করতে পারবেনদায়িত্ব ভাগাভাগিবিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যাওয়ার কারণে আপনার সঙ্গীর সপ্তাহের সব করণীয় খেয়াল নাও থাকতে পারে তাই সেগুলোর একটি তালিকা তৈরি করে কাজগুলো সম্পন্ন হয়েছে কি না সেটি নিশ্চিত করতে শিশুর মাকে সাহায্য করতে পারেনসময়টা একত্রে উপভোগ করুনমাঝের তিন মাসে যেহেতু শিশুর মায়ের শারীরিক অস্বস্তিগুলো কমে আসে এসময়টুকু দুজনে মিলে যথাসম্ভব উপভোগ করার চেষ্টা করুন হয়তো বন্ধুদের সাথে কোথাও ঘুরতে গেলেন কিংবা পছন্দের কোনো রেস্তোরাঁয় খেতে গেলেন বাইরে যেতে ইচ্ছে না করলে ঘরে বসেই একত্রে রিল্যাক্স করতে পারেন ধূমপান থেকে দূরে থাকুনধূমপানের সংস্পর্শে আসলে আপনার নানান স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি তো বাড়েই পাশাপাশি গর্ভের শিশু সময়ের আগে জন্ম নেওয়া ওজন কম হওয়া এমনকি মৃতপ্রসবের মতো বিভিন্ন মারাত্মক সমস্যার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায় তাই গর্ভের শিশুকে সুস্থ রাখতে নিজেকে ধূমপানের প্রভাবমুক্ত রাখা খুবই গুরুত্বপূর্ণনিয়মিত ওজন মাপুনসঠিক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ওজন বৃদ্ধির হার কম কিংবা বেশি হলে সেটি মা ও গর্ভের শিশুর জন্য বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে[৪] ওজন ঠিকমতো বাড়ছে কি না সেটা হিসেব করতে প্রতি সপ্তাহে ওজন মেপে ডায়েরিতে লিখে রাখুন এতে হঠাৎ ওজন বাড়তে কিংবা কমতে শুরু করলেও সহজে ধরে ফেলতে পারবেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানগর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু প্রায় ১৪২ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় একটি ঢেঁড়সের সমান লম্বা তার ওজন প্রায় ১৯০ গ্রামশিশু কানে শুনতে শিখছেশিশুর মাথার দুই পাশে ছোট্ট দুটি কান উঁকি দিচ্ছে সে এখন কানে শুনতে পায় আওয়াজ শুনলে শিশু বিভিন্নভাবে প্রতিক্রিয়া দেখায় যা আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষায় বোঝা যেতে পারেএখন হয়তো তার নড়াচড়া বুঝতে পারবেনদিন দিন আপনার শিশু আরও চঞ্চল হচ্ছে সে হয়তো এখন আপনার পেটের ভেতর তার ছোটো ছোটো হাত–পা ছোড়াছুড়িতে ব্যস্ত আপনি হয়তো তার নড়াচড়া এরই মধ্যে বুঝতে শুরু করেছেন মনে হতে পারে পেটের মধ্যে বুদবুদের মতো কিছু নড়ছে কিংবা হালকা করে পাখির ডানার মতো কিছু একটা ঝাপটা দিয়ে যাচ্ছে প্রথম দিকে অনেকটা এমনই হয় এই অনুভূতি ধীরে ধীরে আপনি তার নড়াচড়া আরও স্পষ্টভাবে বুঝতে পারবেনদেহের আকৃতি সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়ে উঠছেশিশু এখন খুব দ্রুত লম্বা হচ্ছে কয়েক সপ্তাহ আগেও গর্ভের শিশুর মাথাটি শরীরের বাকি অংশের তুলনায় বেশ বড়সড় ছিল তবে এখন শরীরের অন্যান্য অংশগুলো খুব দ্রুত বেড়ে উঠছে তাই মাথাটি দেখতে এখন আর অতটা বড় লাগে না সময়ের সাথে সাথে ছোট্ট শিশুর দেহের আকৃতি আরও সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে থাকবে আপনি হয়তো এতদিনে আপনার শরীরের পরিবর্তনগুলোর সাথে কিছুটা মানিয়ে নিয়েছেন ধীরে ধীরে কাজ করার শক্তি ফিরে পাচ্ছেন তবে মানিয়ে নিতে না পারলেও দুশ্চিন্তা না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিনওজন মাপার নিয়মগর্ভাবস্থায় নিয়মিত ওজন মাপা প্রয়োজন দিনের একই সময়ে ওজন মাপার চেষ্টা করবেন সকালে ঘুম থেকে উঠে বাথরুম সেরে কিছু খাওয়ার আগে ওজন মাপতে পারেনপ্রতি সপ্তাহে ওজন মেপে ডায়েরিতে লিখে রাখতে পারেন এভাবে তালিকা তৈরি করলে ওজন ঠিকমতো বাড়ছে কি না সেটা বুঝতে পারবেনহঠাৎ ওজন বাড়তে কিংবা কমতে শুরু করলেও সহজে ধরে ফেলতে পারবেন সেই অনুযায়ী আপনার খাদ্যাভ্যাস ও ব্যায়ামের অভ্যাসে পরিবর্তন আনতে পারবেন প্রয়োজনে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারবেনমায়ের স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি গর্ভের শিশুর সুস্থ–স্বাভাবিক বিকাশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ স্বাস্থ্যকর হারে ওজন বৃদ্ধি আপনাকে ও গর্ভের শিশুকে সুস্থ রাখার পাশাপাশি সুস্থ ডেলিভারিতেও ভূমিকা রাখে সঠিক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ওজন বৃদ্ধির হার কম কিংবা বেশি হলে সেটি মা ও গর্ভের শিশুর জন্য বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারেগর্ভাবস্থার কোন মাসে কতটুকু ওজন বাড়া উচিত ঠিকমতো ওজন বাড়াতে করণীয় কী নাহলে শিশুর কী ধরনের ক্ষতি হবে—এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের সহজ উত্তর পেতে আমাদের গর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন লেখাটা পড়তে পারেনগর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ ব্যায়ামগর্ভাবস্থায় নিয়মিত শরীরচর্চা করা আপনার ও গর্ভের শিশুর—দুজনের স্বাস্থ্যের জন্যই উপকারী নিয়মিত শরীরচর্চা করলে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া উচ্চ রক্তচাপ কিংবা ডায়াবেটিসের মতো জটিলতার সম্ভাবনা কমে এমনকি ডেলিভারির সময়ে সিজার হওয়ার সম্ভাবনাও কমতে পারেতবে এসময়ে ব্যায়াম এড়িয়ে চলার কথা আপনার মাথায় আসতে পারে গর্ভের সন্তানকে সব ধরনের আঘাত থেকে সুরক্ষিত রাখতে আপনি একটু বেশি সতর্ক হয়ে পড়তে পারেন এবং সেই চিন্তা থেকে গর্ভের শিশুর জন্য ব্যায়াম ক্ষতিকর মনে হতে পারে কিন্তু গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম করা সম্পূর্ণ নিরাপদআপনার যদি আগে থেকে ব্যায়াম করার অভ্যাস না থাকে তাহলে হঠাৎ করে তীব্র শারীরিক কসরত শুরু না করে অল্প অল্প করে ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তুলুন হাঁটাহাঁটি দিয়েই শুরু করতে পারেনআপনার কোনো স্বাস্থ্য জটিলতা থাকলে চিকিৎসকের সাথে গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম নিয়ে আলাপ করুন গর্ভাবস্থায় নিরাপদে করা যায় এমন কিছু ব্যায়ামের টিউটোরিয়াল পেতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেননির্যাতনের শিকার হলে তাৎক্ষণিকভাবে করণীয়গর্ভকালীন সময়ে যদি আপনি আপনার পরিবারের সদস্য অথবা অন্য কারও দ্বারা কোনো রকম শারীরিক অথবা মানসিক নির্যাতনের শিকার হয়ে থাকেন তাহলে দ্রুত আইন প্রয়োগকারী সংস্থাকে জানান নারী ও শিশু নির্যাতন প্রতিরোধ সেলের হটলাইন নম্বর ১০৯/১০৯২১ অথবা জরুরি সেবার হটলাইন নম্বর ৯৯৯ এ ফোন করে আইন প্রয়োগকারী সংস্থার সাহায্য নিতে পারেনগর্ভকালীন চেকআপের সময়ে যেকোনো নির্যাতনের কথা আপনার ডাক্তারকে জানাবেন শারীরিক নির্যাতন অথবা অন্য কোনো কারণে আপনি কোথাও আঘাত পেয়ে থাকলে সেটাও অবশ্যই আপনার ডাক্তারকে জানাবেন তখন ডাক্তার প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পরামর্শ দিতে পারবেনধূমপান থেকে দূরে থাকাআপনার বাড়ির কোনো সদস্যের ধূমপানের অভ্যাস থাকলে সেটি ছেড়ে দেওয়া জরুরি আপনি ধূমপানের সংস্পর্শে আসলে আপনার নানান স্বাস্থ্য সমস্যার ঝুঁকি তো বাড়েই পাশাপাশি গর্ভের শিশু সময়ের আগে জন্ম নেওয়া ওজন কম হওয়া এমনকি মৃত শিশু জন্মানোর মতো বিভিন্ন মারাত্মক সমস্যার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায় তাই গর্ভের শিশুকে সুস্থ রাখতে চাইলে ধূমপান করছে এমন কারও থেকে দূরে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণডেলিভারি নিয়ে চিন্তাভাবনাআপনি কোথায় ও কোন পদ্ধতিতে ডেলিভারি করাতে চান ডেলিভারির সময়ে পরিবারের কোন সদস্যদের আপনার পাশে রাখতে চান—এসব নিয়ে এখন থেকেই পরিকল্পনা করুন এমন কয়েকজন ডাক্তার অথবা হাসপাতালের তালিকা তৈরি করুন যাদের তত্ত্বাবধানে আপনি ডেলিভারি করাতে ইচ্ছুক এরপর সেই তালিকার ডাক্তার ও হাসপাতালগুলোর বিষয়ে বিস্তারিত খোঁজখবর নিনচিকিৎসার ধরন খরচ সময়মতো অ্যাপয়েন্টমেন্ট পাওয়ার সম্ভাবনা ও আপনাদের বাড়ি থেকে জায়গাটার দূরত্ব—এমন বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখুনএ ছাড়া ডেলিভারির সময়ে কারা আপনার সাথে হাসপাতালে যাবেন সেই বিষয়েও সিদ্ধান্ত নিন আপনার সঙ্গী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিতে পারেনঅন্যান্য লক্ষণএই সপ্তাহেও আগের সপ্তাহের মতো আপনার যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— ত্বকে ফাটা দাগ অথবা স্ট্রেচ মার্ক ক্লান্তি ও ঘুমের সমস্যা দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশে ব্যথা হওয়া মাথা ব্যথা নাক থেকে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা ও কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা স্তনে ব্যথা পা কামড়ানো বেশি গরম লাগা মাথা ঘুরানো হাত–পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন যোনিপথে ইনফেকশন মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন— বমি বমি ভাব অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র ঘ্রাণশক্তি ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে সঙ্গীর ওজন খেয়াল রাখতে সাহায্য করুনগর্ভকালীন সময়ে শিশুর মায়ের ওজন ঠিকমতো না বাড়লে গর্ভের শিশু নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করতে পারে পাশাপাশি নবজাতক শিশুর ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম (২৫ কেজির কম) হতে পারেকম ওজনের শিশুরা জন্মের পর থেকেই অনেক দুর্বল থাকে এবং নানান ধরনের জটিলতায় ভোগেঅন্যদিকে অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধিও মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ ও প্রিএক্লাম্পসিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায়[২৭] সিজারের সম্ভাবনাও বাড়তে পারেতাই শিশুর মায়ের ওজন তার জন্য সঠিক অনুপাতে বাড়ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে সাহায্য করতে পারেনগর্ভাবস্থায় মায়ের ওজন কত হওয়া উচিত তা আমাদের লেখা থেকে পড়ে নিতে পারেন চেকআপের সময়ে ডাক্তারের কাছ থেকেও জেনে নিতে পারেন সঙ্গীকে নিয়মিত ওজন মাপার কথা মনে করিয়ে দিন তার সাথে কথা বলে ওজনের চার্ট বানাতে সাহায্য করতে পারেনযদি আপনাদের বাড়িতে ওজন মাপার মেশিন না থাকে তাহলে সঙ্গীকে সাধ্যের মধ্যে একটা ভালো ওজন মাপার মেশিন গিফট করতে পারেনআপনার ওজনও কি বাড়ছেশিশুর মায়ের পাশাপাশি আপনারও কি ওজন বাড়ছে সঙ্গীর বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছার সময়ে আপনিও হয়তো পাশে ছিলেন তখন হয়তো খাওয়াদাওয়া একটু বেশিই হয়ে গিয়েছে আবার কাজের চাপে এবং সঙ্গীর কোনো অসুস্থতার কারণে হয়তো নিয়মিত ব্যায়ামের রুটিনে ছেদ পড়েছে এসব মিলিয়ে আপনার ওজনটাও বেড়ে যেতে পারেআপনার ওজন বেড়ে যাওয়ার কারণগুলো খুঁজে বের করার চেষ্টা করুন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চলার চেষ্টা করুন নিয়মিত ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন শিশুর মায়ের সাথে একসাথে ব্যায়াম করতে পারেন যদি চেষ্টা করার পরও আপনার ওজন না কমে বরং শিশুর মায়ের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়তে থাকে তাহলে একজন ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিতে পারেনসিগারেট থেকে দূরে থাকুনশিশুর মায়ের আশেপাশে ধূমপান করলে গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যেমন শিশু সময়ের আগে জন্ম নেওয়া ওজন কম হওয়া এমনকি মৃত শিশু জন্মানোর মতো বিভিন্ন মারাত্মক সমস্যার ঝুঁকি অনেকখানি বেড়ে যায়আপনি অথবা বাড়ির কোনো সদস্য ধূমপান করলে সেটা ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন ট্রান্স ফ্যাট এড়িয়ে চলুনডালডা বা বনস্পতি ঘি দিয়ে তৈরি খাবার (যেমন বিস্কুট চানাচুর চিপস ড্রাই কেক) এবং ডুবো তেলে ভাজাপোড়া স্ন্যাকস (যেমন সিঙ্গাড়া সমুচা জিলাপি পাকোড়া পুরি)—এসবে ক্ষতিকর ট্র্যান্স ফ্যাট থাকতে পারে তাই এসব খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুনখাবার তালিকায় আঁশযুক্ত খাবার রাখুনকোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে নিয়মিত আঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন যেমন ফলমূল শাকসবজি ডাল লাল চাল ও লাল আটার মতো গোটা শস্যদানা বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও বীজ তবে হুট করে অনেক বেশি আঁশযুক্ত খাবার না খেয়ে খাবার তালিকায় ধীরে ধীরে ফাইবার যোগ করুনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানগর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান আপনার গর্ভের শিশু এখন প্রায় ১৫৩ সেন্টিমিটার লম্বা—প্রায় একটি গাজরের সমান তার ওজন প্রায় ২৪০ গ্রামশিশুর হাড় মজবুত হচ্ছেছোট্ট শিশুর শরীরের হাড়গুলো মজবুত হচ্ছে আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করলে শিশুর বাড়ন্ত হাড়গুলো এখন দেখা যাবেফুসফুস বিকশিত হচ্ছেশিশুর ফুসফুসে নালীর মতো ছোটো ছোটো শাখাপ্রশাখা তৈরি হতে শুরু করেছে আগামী কয়েক মাস ধরে এই শাখাপ্রশাখা তৈরির কাজ চলতে থাকবে এসব পরবর্তীতে বাতাস থেকে অক্সিজেন নিতে সাহায্য করবেডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু তৈরির কাজ শুরু হয়েছেগর্ভের শিশু যদি মেয়ে হয়ে থাকে তাহলে ইতোমধ্যেই তার ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেছেশিশু ছেলে না কি মেয়ে তা এখন বোঝা যাবেশিশুর জননাঙ্গ অনেকখানি পরিণত হয়ে গিয়েছেএ সপ্তাহে যদি আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করেন তাহলে গর্ভের শিশু ছেলে না কি মেয়ে সেটি বোঝা যাবে তবে কখনো কখনো পরীক্ষার সময়ে গর্ভের শিশুর অবস্থানের কারণে বোঝা সম্ভব নাও হতে পারে ট্র্যান্স ফ্যাট এড়িয়ে চলাট্র্যান্স ফ্যাট হল এক ধরনের চর্বি যা বিভিন্নভাবে শরীরের ক্ষতি করতে পারে এই ফ্যাট হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়াতে পারে তাই যেসব খাবারে ট্র্যান্স ফ্যাট আছে সেগুলো খাদ্যাভ্যাস থেকে সরিয়ে ফেলুন যেমন ডালডা বা বনস্পতি ঘি দিয়ে তৈরি খাবার—বিস্কুট চানাচুর চিপস ড্রাই কেক ডুবো তেলে ভাজাপোড়া স্ন্যাকস (যেমন সিঙ্গাড়া সমুচা জিলাপি পাকোড়া পুরি)—এসব খাবারেও ক্ষতিকর ট্রান্স ফ্যাট থাকতে পারেগর্ভাবস্থায় আরও কোন কোন খাবার এড়িয়ে চলা ভালো সেসব জানতে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা আর্টিকেলটি পড়ুনকোষ্ঠকাঠিন্যের দ্রুত সমাধানগর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য খুব কমন সমস্যা পায়খানা খুব শক্ত হয়ে আছে পায়খানার চাপ এসেছে কিন্তু এখন টয়লেটে গেলে খুব ব্যথা হবে বুঝতে পারছেন—এমন হলে চাপাচাপি করে পায়খানা করার চেষ্টা করবেন না তাহলে পায়খানার রাস্তা চিঁড়েফেটে গিয়ে ফিশার বা গেঁজ হতে পারে এই জরুরি অবস্থা সমাধানে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে একটা বিশেষ ওষুধ ব্যবহার করতে পারেন—পায়খানার রাস্তায় দেয়ার গ্লিসারিন সাপোজিটরি এটি পায়খানাকে দ্রুত নরম করে পাশাপাশি পায়খানার রাস্তাকে পিচ্ছিল করে পায়খানা হতে সাহায্য করেকোষ্ঠকাঠিন্য ঠেকানোর ঘরোয়া উপায় জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনকোমরের নিচের দিকে ব্যথাগর্ভাবস্থায় কোমরের নিচের দিকে ব্যথা করতে পারে দুই পায়ের মাঝখানে যেসব হাড় থাকে সেগুলোর জয়েন্ট শক্ত হয়ে যাওয়া বা স্বাভাবিক নড়াচড়ায় সমস্যা হওয়ার কারণে ব্যথা হয় হাঁটা সিঁড়ি দিয়ে ওঠানামা করা বিছানায় এপাশওপাশ করার মতো সাধারণ কাজের সময়ে ব্যথা বেড়ে যেতে পারেযেসব অঙ্গভঙ্গিতে ব্যথা হয় সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন তিনি আপনাকে ব্যথা সারানোর বিভিন্ন ব্যায়াম শিখিয়ে দিতে পারেন বা ফিজিওথেরাপি নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেনখাদ্যে ফাইবার বা আঁশএ সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশ সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন যেমন ফলমূল শাকসবজি ডাল লাল চাল ও লাল আটার মতো গোটা শস্যদানা বিভিন্ন ধরনের বাদাম ও বীজ এগুলো হার্ট ভালো রাখতে সাহায্য করে পায়খানা নরম করতে এবং নিয়মিত পায়খানা হতে সাহায্য করে এজন্য ভাতের সাথে শসা ও টমেটোর সালাদ খেয়ে নিতে পারেন ভাতের ওপরে অল্প পরিমাণে তিসির বীজ বা সূর্যমুখীর বীজ ছিটিয়ে খেতে পারেন সকালের নাশতায় দুধের সাথে চিয়া বীজ কিংবা বিকেলের নাশতায় কয়েকটা চিনাবাদাম বা গাজর খেতে পারেনতবে খাবার তালিকায় হুট করে অনেক বেশি আঁশযুক্ত খাবার যোগ করলে আপনার পেট ফাঁপা বা পেট ব্যথার সমস্যা হতে পারে তাই খাবার তালিকায় ধীরে ধীরে ফাইবার যোগ করুন এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনগর্ভাবস্থায় আরও কী কী খাবার খাওয়া ভালো সেসব জানতে গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা আর্টিকেলটি পড়ুনঅন্যান্য লক্ষণআপনার অথবা গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য সংক্রান্ত কোনো বিষয় নিয়ে দুশ্চিন্তা হচ্ছে দুশ্চিন্তা কিংবা মন খারাপ না করে ডাক্তারকে এসব চিন্তার কথা জানান তিনি হয়তো আপনাকে উপযুক্ত পরামর্শ দিতে পারবেনএ সপ্তাহেও আগের সপ্তাহের মতো আপনার যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— ক্লান্তি ও ঘুমের সমস্যা ত্বকে ফাটা দাগ অথবা স্ট্রেচ মার্ক দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশে ব্যথা হওয়া মাথা ব্যথা নাক থেকে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা স্তনে ব্যথা পা কামড়ানো বেশি গরম লাগা মাথা ঘুরানো হাত–পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন যোনিপথে ইনফেকশন মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন— বমি বমি ভাব অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র ঘ্রাণশক্তি ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলুনভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড জাতীয় খাবারে সাধারণত ট্র্যান্স ফ্যাট নামের অস্বাস্থ্যকর চর্বি থাকে যা বিভিন্নভাবে শরীরের ক্ষতি করতে পারে গর্ভবতী মাসহ সবারই এই ধরনের অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলা প্রয়োজনআপনি যদি এসময়ে বাড়িতে ভাজাপোড়া বা ফাস্টফুড আনেন শিশুর মায়ের জন্য এসব মুখরোচক খাবার এড়িয়ে স্বাস্থ্যকর খাবারের দিকে মনোযোগ দেওয়া কঠিন হতে পারে তাই আপনি ও বাড়ির অন্যান্য সদস্যরাও ভাজাপোড়া ও ফাস্টফুড এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন সবাই মিলে স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে তুলুনপাতে স্বাস্থ্যকর খাবার সাজানোর উপায় জেনে নিন গর্ভাবস্থায় শিশুর মাকে দৈনিক কমপক্ষে ৪০০ গ্রাম রঙিন ফল ও বিভিন্ন ধরনের শাকসবজি খেতে হবে এসব ফলমূল ও শাকসবজি মা ও গর্ভের শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ অনেকগুলো ভিটামিন ও মিনারেলের চাহিদা মেটায় প্লেটে খাবার সাজানোর একটা সহজ পদ্ধতি আছে যা প্রতি বেলার খাবারে ফলমূল ও শাকসবজি বাড়াতে সাহায্য করে প্রথমেই প্লেটে ভাত অথবা রুটি না নিয়ে বরং শাকসবজি ও ফলমূল দিয়ে প্লেটের অর্ধেকটা ভরে ফেলুন ফল আলাদা বাটিতে নিতে পারেন তবে পরিমাণটা এমনভাবে চিন্তা করবেন যেন প্লেটের অর্ধেক শাকসবজি আর ফলমূলে ভরে যায় এরপর প্লেটে বাকি যে অর্ধেক জায়গা ফাঁকা থাকে সেটাকে আবার মনে মনে দুই ভাগ করুন এবারে ফাঁকা জায়গার একভাগে ভাত অথবা রুটির মতো শর্করা নিন লাল চালের ভাত বা লাল আটার রুটি হলে ভালো হয় অন্যভাগে প্রোটিন জাতীয় খাবার নিয়ে নিন যেমন মাছ ডাল মাংস অথবা ডিম এরপর খাওয়া শুরু করুন শিশুর মাকে এভাবে প্লেটে খাবার সাজাতে সহায়তা করতে পারেন তবে এই সহজ পরামর্শটা শুধু শিশুর মায়ের জন্য নয় আপনার ও বাড়ির অন্য সদস্যরাও এটি অনুসরণ করে শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার পরিমাণ বাড়াতে পারেন বাড়ির সবাই স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস মেনে চললে শিশুর মাকে বেশি করে অনুপ্রেরণা দিতে পারবেনকোষ্ঠকাঠিন্যের ওষুধ এনে রাখুনগর্ভবতী মায়েদের কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া খুব কমন জরুরি অবস্থায় পায়খানাকে দ্রুত নরম করতে এবং পায়খানার রাস্তাকে পিচ্ছিল করে সহজে পায়খানা করার জন্য গ্লিসারিন সাপোজিটরি ব্যবহার করা যেতে পারেশিশুর মায়ের জন্য এই ওষুধটা কিনে বাসায় রেখে দিতে পারেন ওষুধের সাথে থাকা নির্দেশিকা থেকে সংরক্ষণের সঠিক উপায় জেনে নিন কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধের ঘরোয়া উপায় জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনচেকআপ করানো হয়েছে তোএ মাসের চেকআপ করানো না হয়ে থাকলে সেটার ব্যবস্থা করতে সাহায্য করুন নিয়মিত চেকআপে যাওয়া মা ও গর্ভের শিশুর সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চেকআপে কোনো সমস্যা ধরা পড়লে দ্রুত পরীক্ষানিরীক্ষা করে সেটার চিকিৎসা শুরু করা যাবেসবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাদের গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে এরপর ৩৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার তারপর প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবেতাই চেকআপের জন্য প্রস্তুতি নিন কোনো প্রশ্ন মাথায় আসলে তা লিখে নিয়ে যান সঙ্গী বিশেষ কিছু মনে রাখতে চাইলে সেটাও লিখে রাখুন এতে চেকআপের দিন তাড়াহুড়ায় থাকলেও প্রশ্ন ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকবে না নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ এড়িয়ে চলুনজ্বর ও ব্যথার জন্য সচরাচর ব্যবহার করা হয় এমন কিছু ওষুধ (যেমন আইবুপ্রোফেন ও ন্যাপ্রক্সেন) গর্ভাবস্থায় খাবেন না এগুলো ননস্টেরয়ডাল প্রদাহনাশক ওষুধ হিসেবে পরিচিত গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহ বা তারপরে গর্ভবতী নারী এই ওষুধ সেবন করলে গর্ভের শিশুর কিডনিতে সমস্যা হতে পারেস্ন্যাকস হিসেবে বাদাম খেতে পারেনবাদাম হলো প্রোটিন স্বাস্থ্যকর ফ্যাট ভিটামিন ও বিভিন্ন মিনারেল সমৃদ্ধ মজাদার নাস্তা তাই গর্ভাবস্থায় মাঝে মাঝে ছোটো একমুঠো বাদাম হালকা নাস্তা হিসেবে খেতে পারেন তবে লবণ বা চিনি না মিশিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করবেননিয়মিত ব্লাড প্রেসার মাপুনগর্ভাবস্থায় কারো কারো রক্তচাপ বেড়ে যায় এবং এই সংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেয় সাধারণত গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পর থেকে এই সমস্যাগুলো দেখা দেয় আপনি হয়তো প্রেসার বেড়ে যাওয়ার ব্যাপারটা ঘরে বসে বুঝতে পারবেন না তাই অবশ্যই নিয়মিত চেকআপে যাবেন এবং আপনার ব্লাড প্রেসার পরীক্ষা করাবেন সম্ভব হলে বাড়িতেও নিয়মিত প্রেসার মাপবেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানগর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠা নিশ্চিত করতে আগের সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও প্রতিদিন আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশুর ওজন প্রায় ৩০০ গ্রাম এরই মধ্যে সে প্রায় ২৫৬ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় একটি শসার সমান দৈর্ঘ্যের এই হিসাবটা শিশুর মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্তএতদিন পর্যন্ত শিশুর মাথা থেকে নিতম্ব পর্যন্ত দৈর্ঘ্য মাপা হতো কেননা তখন তার পা দুইটি কুঁকড়ে থাকতো ফলে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত দৈর্ঘ্য মাপা সম্ভব হতো না তবে এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত মাপা যায়শিশুর ত্বকে তুলতুলে লোম আছেএখনো শিশুর ত্বকের নিচের চর্বির স্তর তৈরি হয়নি তাই এখনো তার ত্বক অনেক পাতলা এরই মধ্যে আপনার শিশুর পুরো শরীর জুড়ে পাতলা ও তুলতুলে লোমের আবরণ তৈরি হয়েছে[৭]শিশুর ত্বক এখন একটি সাদা আবরণে ঢাকা আছেএসময়ে আপনার শিশুর ত্বক এক ধরনের সাদা তেলতেলে ও পিচ্ছিল আবরণে ঢাকা থাকেভার্নিক্স নামের এই আবরণটি ছোট্ট শিশুর নাজুক ত্বককে সুরক্ষিত রাখেনাহলে হয়তো গর্ভের ভেতরের অ্যামনিওটিক তরলের সংস্পর্শে আসার কারণে শিশুর ত্বক শুষ্ক ও খসখসে হয়ে যেতএ ছাড়াও এই আবরণটি পিচ্ছিল হওয়ার কারণে এটি পরবর্তীতে প্রসবের সময়ে শিশুকে সহজে বের হয়ে আসতে সাহায্য করে শিশুর গায়ের নরম তুলতুলে লোম এই পিচ্ছিল আবরণ ধরে রাখতে সাহায্য করেশিশুর আঙ্গুলে ছাপ বসেছেস্বাক্ষর হিসেবে আঙ্গুলের ছাপ ব্যবহার করা হয় কারণ একেকজনের আঙ্গুলের ছাপ একেকরকম হয় ছোট্ট শিশুর হাতপায়ের আঙ্গুলে এখন স্থায়ীভাবে ছাপ বসে গিয়েছেএই আঙ্গুলের ছাপ আপনার সোনামণির একান্ত নিজস্ব ও স্বতন্ত্র সময়ের সাথে সাথে রেখাগুলো আরও বিকশিত হতে থাকবে এ সপ্তাহটা পার হলেই গর্ভাবস্থার অর্ধেকটা সময় পার হয়ে যাবেস্বাস্থ্যকর নাস্তা হিসেবে বাদাম খাওয়া প্রোটিন ও স্বাস্থ্যকর ফ্যাটের ভালো উৎস হলো বাদামনিয়মিত বাদাম খাওয়ার সাথে হার্টের রোগ হওয়ার ঝুঁকি কমার সম্ভাবনা পাওয়া গেছেতাই মাঝে মাঝে হালকা নাস্তা হিসেবে ছোটো একমুঠো বাদাম বেছে নিতে পারেনচিনাবাদাম আমন্ড বা কাঠবাদাম ওয়ালনাট কাজুবাদাম খেতে পারেন কেনার সময়ে তেল ছাড়া ভাজা বাদাম বেছে নিবেন তবে বাদাম খাওয়ার সময়ে লবণ মিশিয়ে খাবেন না আবার একসাথে অনেক বাদাম খেয়ে ফেলবেন না বাদাম পুষ্টিকর হলেও ক্যালরিবহুল অতিরিক্ত বাদাম খাওয়ার কারণে দ্রুত ওজন বৃদ্ধি হতে পারে তাই নিয়মিত পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার কথা মাথায় রাখবেনপায়ের পাতার ব্যায়াম গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করলে বিশেষ করে পায়ের ও গোড়ালির ব্যায়াম করলে পায়ের রক্ত চলাচলে উন্নতি হয় এভাবে পা কামড়ানোর সমস্যা ঠেকানো যেতে পারে এজন্য খুব সহজ কিছু পায়ের পাতার ব্যায়াম করতে পারেনপ্রথমে ডান পা দিয়ে শুরু করতে পারেন গোড়ালির জয়েন্ট ভাঁজ করে পায়ের পাতা ওপরের দিকে ওঠান তারপর টানটান করে দ্রুত নিচের দিকে নামান এভাবে দ্রুত ৩০ বার পায়ের পাতা ওঠানামা করবেনতারপর পায়ের পাতা বৃত্তাকারে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার মতো করে ঘোরান প্রথমে ডান দিক থেকে শুরু করে ৮ বার ঘোরাবেন তারপর বাম দিকে থেকে শুরু করে ৮ বার ঘোরাবেন অর্থাৎ প্রথমে ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘুরে সেদিকে তারপর ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘুরে তার বিপরীত দিকে গোড়ালি এবং পায়ের পাতা ঘোরাবেন এমন করে মোট ১৬ বার ঘোরাবেন ডান পায়ের ব্যায়াম শেষ করে একই নিয়মে বাম পায়ের ব্যায়াম করুনদিনের বেলা কাজের ফাঁকে এসব ব্যায়াম করার অভ্যাস করে ফেলুনশরীর ফুলে যাওয়া ও প্রিএক্লাম্পসিয়া গর্ভাবস্থায় আপনার পায়ে হাতে অথবা মুখে পানি জমে কিছুটা ফোলা ফোলা ভাব আসতে পারে অনেকেরই এমনটা দেখা দেয় এটা সাধারণত কোনো দুশ্চিন্তার কারণ নয় তবে কখনো কখনো প্রিএক্লাম্পসিয়া নামের গর্ভাবস্থার একটি জটিল সমস্যার কারণেও হাতে–পায়ে পানি আসতে পারেতাই এমন হলে অবশ্যই আপনার ডাক্তারকে জানাবেন তিনি আপনার রক্তচাপ মেপে দেখবেন এবং অন্যান্য কিছু পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে শরীর ফুলে যাওয়ার কারণ খুঁজে দেখতে পারবেনসাধারণত গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পর থেকে শুরু করে ডেলিভারির চার সপ্তাহ পর্যন্ত প্রিএক্লাম্পসিয়া রোগ দেখা দিতে পারে তাই এখন থেকেই এই রোগের লক্ষণগুলো আপনার জানা থাকা জরুরি যেমন তীব্র মাথাব্যথা দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে যাওয়া কিংবা চোখে আলোর ঝলকানি দেখা হঠাৎ করেই হাত পা অথবা মুখ ফুলে যাওয়া অথবা এমন যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়া[১৭] এমন হলে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যাবেনপ্রিএক্লাম্পসিয়া রোগ নিয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনচিকেনপক্স থেকে সুরক্ষা গর্ভাবস্থায় ২০ তম সপ্তাহের পরে চিকেনপক্স হলে তা আপনার জন্য মারাত্মক ভয়ের কারণ হতে পারে তবে ছোটোবেলায় আপনার যদি চিকেনপক্স হয়ে থাকে তাহলে দুশ্চিন্তার কারণ নেই[১৮] কারণ একবার চিকেনপক্স হলে সাধারণত দ্বিতীয়বার আর হয় না[১৯]আপনার যদি আগে কখনো চিকেনপক্স না হয়ে থাকে চিকেনপক্স হয়েছে কি না সেটা জানা না থাকে অথবা কোন কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয় তাহলে চিকেনপক্স থেকে খুব সাবধানে থাকবেন আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলবেন শুধু ত্বকের সংস্পর্শ নয় বাতাসের মাধ্যমেও চিকেনপক্স ছড়াতে পারে[২০] তাই চিকেনপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তির আশেপাশে যাবেন নাযদি কোনো কারণে আক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে আসেন তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন আপনার যাতে চিকেনপক্স না হয় তিনি সেজন্য চিকিৎসা শুরু করতে পারবেনঅন্যান্য লক্ষণএ সপ্তাহেও আগের সপ্তাহের মতো আপনার যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—ক্লান্তি ও ঘুমের সমস্যাত্বকে ফাটা দাগ অথবা স্ট্রেচ মার্কদাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়াপেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশে ব্যথা হওয়ামাথা ব্যথানাক থেকে রক্ত পড়াপেট ফাঁপা লাগা ও কোষ্ঠকাঠিন্যবদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করাস্তনে ব্যথাবেশি গরম লাগামাথা ঘুরানোপ্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশনযোনিপথে ইনফেকশনমুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়াতৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়াচুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন—বমি বমি ভাব অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা তীব্র ঘ্রাণশক্তি ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে প্রিএক্লাম্পসিয়া সম্পর্কে সতর্ক থাকুনগর্ভাবস্থায় কারো কারো প্রিএক্লাম্পসিয়া নামের রোগ দেখা দিতে পারে এই রোগের অন্যতম লক্ষণ ব্লাড প্রেসার বেড়ে যাওয়া ও প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন বেরিয়ে যাওয়া এগুলো ঘরে বসে বোঝা কঠিন তাই নিয়মিত চেকআপে গিয়ে ব্লাড প্রেসার ও প্রস্রাব পরীক্ষা করানো খুব জরুরি মেশিন থাকলে বাড়িতেও নিয়মিত শিশুর মায়ের প্রেসার মাপতে পারেনএই রোগের অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে হঠাৎ করেই হাত মুখ অথবা পা ফুলে যাওয়া তীব্র মাথাব্যথা দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে যাওয়া চোখে আলোর ঝলকানি দেখা অথবা এসব যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়া এমন কোনো লক্ষণ দেখা দিলে শিশুর মাকে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবেন গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পর থেকে শুরু করে ডেলিভারির চার সপ্তাহ পর্যন্ত এই রোগ দেখা দিতে পারেনির্দিষ্ট কিছু ওষুধ এড়িয়ে চলতে মনে করিয়ে দিনঅন্য সময়ে ব্যবহার করা যায় এমন কিছু ওষুধ গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলতে হয় যেমন আইবুপ্রোফেন ও ন্যাপ্রক্সেন[২১] জ্বর বা ব্যথার জন্য এই ওষুধগুলো অনেকেই দোকান থেকে কিনে সেবন করেন এগুলো ননস্টেরয়ডাল প্রদাহনাশক ওষুধ হিসেবে পরিচিতগর্ভাবস্থায় এই ওষুধগুলো এড়িয়ে চলতে হয় এবং শুধুমাত্র ডাক্তারের পরামর্শে এই ওষুধ সেবন করা যায় বিশেষ করে গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহ বা তারপরে গর্ভবতী নারী এই ওষুধ সেবন করলে গর্ভের শিশুর কিডনিতে সমস্যা হতে পারে[২২][২৩]তাই শিশুর মাকে আজই এই বিষয়ে সতর্ক করুন জ্বর বা ব্যথার জন্য আপনাকে ফার্মেসি থেকে ওষুধ আনতে বললে বিষয়টা মাথায় রাখবেন প্রয়োজনে শিশুর মা প্যারাসিটামল খেতে পারেন যা গর্ভাবস্থায় সেবন করা নিরাপদচিকেনপক্স থেকে নিজেদের সুরক্ষিত রাখুনগর্ভাবস্থায় চিকেনপক্স হলে তা শিশুর মায়ের জন্য গুরুতর ক্ষতির কারণ হতে পারে বিশেষ করে গর্ভাবস্থার ২০ তম সপ্তাহের পরে[২৪] তাই বাড়ির সব সদস্যকে সতর্ক করে দিন যাতে তারা চিকেনপক্সে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ এড়িয়ে চলে নাহলে তাদের মাধ্যমে শিশুর মায়ের কাছে চিকেনপক্স ছড়াতে পারেদুজনে মিলে বেবিমুন কাটিয়ে আসুনএসময়ে সাধারণত শিশুর মায়ের অস্বস্তিকর লক্ষণগুলো প্রথম কয়েক মাসের তুলনায় কিছুটা কমে আসে আবার শেষের মাসগুলোর মতো চলাফেরায় অস্বস্তি ব্যথাবেদনা কিংবা যেকোনো মুহূর্তে প্রসব শুরু হয়ে যাওয়ার দুশ্চিন্তা থাকে না তাই এখন সময় করে হানিমুনের মতো বেবিমুন কাটিয়ে আসতে পারেনআপনাদের পছন্দের কোনো জায়গা থেকে ঘুরে আসতে পারেন দূরে কোথাও যেতে ইচ্ছে না করলে কয়েকদিনের ছুটি নিয়ে বাড়িতেই একসাথে সময় কাটাতে পারেন দুজনেরই পছন্দ—এমন কোনো কাজ করে একান্তে সময় কাটান নিজেদের জন্য সুন্দর সুন্দর কিছু স্মৃতি তৈরি করে রাখুন মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিনএ সময়ে আপনার মনে নানান ধরনের চিন্তা ঘুরপাক খাওয়া স্বাভাবিক চেষ্টা করবেন নিজেকে মানসিকভাবে চাঙ্গা রাখতে প্রয়োজনে শিশুর বাবা পরিবারের অন্যান্য সদস্য ও সহকর্মীদের কাছে সাহায্য চাইতে দ্বিধা বোধ করবেন না গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে আপনার ডাক্তারকেও মনের কথা খুলে বলতে পারেনব্যায়াম করা চালিয়ে যাননিয়মিত ব্যায়াম করা চালিয়ে যান নতুন করে ব্যায়াম শুরু করলে একটু চ্যালেঞ্জিং মনে হতে পারে সেক্ষেত্রে ধীরে ধীরে সহনশীলতা বাড়াতে চেষ্টা করুনক্যালসিয়াম ও আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান এগুলো গর্ভের শিশুর ব্রেইন হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে[১][২] পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক কিছু স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে[ এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত প্রায় ২৬৭ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় একটি সাগর কলার সমান তার ওজন এখন প্রায় ৩৫০ গ্রামছোট্ট সোনামণি এখন স্বাদ বুঝতে পারেআপনার শিশুর জিভে ছোট্ট ছোট্ট টেস্ট বাড বা স্বাদ কোরক তৈরি হয়েছে এই স্বাদ কোরকের সাহায্যে সে এখন স্বাদ বুঝতে শুরু করেছে গর্ভে শিশু যে পানির মধ্যে আছে সেই পানি সে অল্প অল্প করে গিলে নেয় এই পানিতে মিষ্টি বা তেঁতো স্বাদ সে এখন ধরতে পারেআপনি যে ধরনের খাবার খাচ্ছেন সেসব খাবারের স্বাদ শিশু বুঝতে শুরু করেছে বড় হয়ে সে কোন ধরনের খাবার পছন্দ করবে তার ওপর আপনার এখনকার খাদ্যাভ্যাসের প্রভাব পড়তে পারে তাই নিয়মিত স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন নড়াচড়া ক্রমশ বাড়ছে আপনার গর্ভে শিশুর চঞ্চলতা বেড়েই চলেছে গর্ভের ভেতরে সে হয়তো লাথি দিচ্ছে এবং দিন দিন তার লাথিগুলো আরও শক্তিশালী হচ্ছে ছোট্ট সোনামণির মাঝে মধ্যে হেঁচকি উঠতে পারে শিশু হয়তো এখন মাঝে মাঝে হেঁচকি তুলছে মজার বিষয় হলো সে যখন হেঁচকি তোলে তখন আপনি পেটের ভেতরে হালকা ঝাঁকুনির মতো নড়াচড়া অনুভব করতে পারেন আপনি গর্ভাবস্থার প্রায় অর্ধেকটা সময় পার করে ফেলেছেন আপনাকে অভিনন্দনপঞ্চম চেকআপ আপনার পঞ্চম গর্ভকালীন চেকআপের সময় হয়ে এসেছে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাকে গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে এরপর ৩৬ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার তারপর প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবেতাই এই মাসে কখন চেকআপ করাবেন তা ঠিক করে ফেলুন এবং ডাক্তারের এপয়েন্টমেন্ট নিয়ে নিয়ে নিনঝলমলে চুলগর্ভাবস্থায় শরীরের নানান পরিবর্তনের সাথে তাল মিলিয়ে আপনার চুলেও বেশ কিছু পরিবর্তন আসতে পারে হয়তো আপনার চুল আগের চেয়ে ঘন মজবুত ও ঝলমলে হয়ে যাচ্ছে এবং দ্রুত বড় হচ্ছেতবে প্রসবের পর অনেকে চুল পড়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন শরীরে গর্ভাবস্থার হরমোনগুলো কমে আসার কারণে এমনটা হয়ে থাকে[১০] এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে প্রসবের ৬ মাসের মধ্যে চুল আগের অবস্থায় ফিরে আসে[১১]গর্ভাবস্থায় পাইলস বা অর্শগর্ভাবস্থায় পাইলস বা অর্শ খুব কমন সমস্যা একে ডাক্তারি ভাষায় হেমোরয়েড বলা হয় মলদ্বারের অথবা পায়খানার রাস্তার ভেতরের কিংবা আশেপাশের রক্তনালীগুলো ফুলে গোটার মতো হয়ে যায় এতে পায়খানার পর রক্ত যেতে পারে মলদ্বারের চারপাশে ব্যথা হতে পারে মলদ্বার দিয়ে গোটার মতো কিছু বেরিয়ে আসতে পারেগর্ভকালীন সময়ে হরমোনের তারতম্যের জন্য রক্তনালীগুলো শিথিল হয়ে যায় পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যাও বেড়ে যায় এসব কারণে এই সময়ে আপনার পাইলস হতে পারেব্যথা কমানোর জন্য ঠাণ্ডা সেঁক দিতে পারেন একটি প্যাকেটে কিছু বরফ নিয়ে সেটা তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে ফোলা অংশের ওপরে লাগালে আরাম লাগতে পারেপাইলস সারানোর কার্যকর ঘরোয়া উপায় জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনছোট্টমণির জন্য চিঠিআপনার মনে নিশ্চয়ই ছোট্টমণিকে ঘিরে নানান চিন্তাভাবনা আর স্বপ্ন ঘোরাফেরা করছে এই অনুভূতিগুলোকে হারিয়ে যেতে না দিয়ে ভবিষ্যতের ছোট্টমণির কাছে চিঠির মতো করে লিখে রাখতে পারেনশিশু গর্ভে থাকার সময়ে কোন খাবারগুলো খেতে ইচ্ছে করছিল তার জামাকাপড় আর ঘুমানোর জায়গা কিভাবে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা করছেন—এমন সব মজার তথ্য সেখানে লিখে রাখতে পারেন একদিকে আপনার মধুর স্মৃতিগুলো জমে থাকবে অন্যদিকে শিশুর জন্য ভবিষ্যতে একটা দারুণ উপহার হবেমানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নেওয়াগর্ভকালীন সময় এবং গর্ভাবস্থার আগে ও পরে—পুরোটা সময় জুড়ে আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের প্রতি যত্নশীল হওয়া গুরুত্বপূর্ণ এই সময়ে আপনার অল্পতেই মন খারাপ আতঙ্কিত কিংবা হতাশ লাগতে পারে নিজেকে একা মনে হতে পারে যেন কেউ আপনাকে বুঝতে পারছে না নানান অজানা আশঙ্কা ও হতাশায় মন খারাপ হয়ে যেতে পারেমা হতে চলেছেন বলে যে আপনি সবসময় হাসিখুশি থাকবেন বিষয়টা এমন নয় মন খারাপ দুশ্চিন্তা কিংবা মানসিক চাপ অনুভব করলে নিজেকে দোষ দিবেন নামন ভালো রাখার জন্য প্রতিদিন ডায়েরি লিখতে পারেন এতে করে আপনার মনের অগোছালো সব চিন্তাভাবনা গুছিয়ে উঠে মন কিছুটা হালকা লাগতে পারে মনের কথাগুলো সঙ্গী বন্ধুবান্ধব অথবা পরিবারের নির্ভরযোগ্য কারও সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারেনমন খারাপ ও দুশ্চিন্তার বিষয়ে কোনো ধরনের সংকোচ না করে আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলে তার পরামর্শ নিন তিনি আপনার মনোবল বাড়াতে সাহায্য করতে পারেন প্রয়োজনে মনোরোগ বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করতে পারেনঅন্যান্য লক্ষণএ সপ্তাহেও আগের সপ্তাহের মতো আপনার যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—ক্লান্তি ও ঘুমের সমস্যা ত্বকে ফাটা দাগ অথবা স্ট্রেচ মার্ক দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশে ব্যথা হওয়া মাথা ব্যথা নাক থেকে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা ও কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা বেশি গরম লাগা মাথা ঘুরানো হাত–পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন যোনিপথে ইনফেকশন মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন—ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারেবমি বমি ভাব অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা স্তনে ব্যথা এবং বোঁটা থেকে দুধের মতো তরল বের হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে অ্যানোমালি স্ক্যানের কথা মনে করিয়ে দিনগর্ভাবস্থার ১৮–২২তম সপ্তাহের মধ্যে একটি বিশেষ আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করাতে হয় যার নাম অ্যানোমালি স্ক্যান এর সাহায্যে শিশুর জন্মগত কোনো ত্রুটি আছে কি না তা খুঁজে দেখা হয় এখনো না করিয়ে থাকলে এ সপ্তাহেই দুইজন মিলে অ্যানোমালি স্ক্যান করানোর পরিকল্পনা করে ফেলুনগর্ভাবস্থায় কোন কোন খাবার খাওয়া উচিত না তা জেনে নিনগর্ভাবস্থায় নানান রকম ইনফেকশনের ঝুঁকি থাকে তাই এসময়ে কাঁচা বা ভালোভাবে রান্না হয়নি এমন খাবার এড়িয়ে চলা উচিত যেমন কাঁচা বা আধাসিদ্ধ ডিম কাঁচা দুধ কাঁচা দুধ দিয়ে তৈরি দইমিষ্টিপনির পাশাপাশি অপরিষ্কার পানি দিয়ে তৈরি খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলা উচিত[১২]এ ছাড়াও ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় (যেমন চা কফি নির্দিষ্ট কিছু কোমল পানীয় ও এনার্জি ড্রিঙ্কস) এড়িয়ে চলা উচিত কারণ ক্যাফেইন গর্ভের শিশুর নানাভাবে ক্ষতি করতে পারে বাজার করার সময় এবং বাসায় রান্নাবান্না করার সময় এ বিষয়গুলো খেয়াল রাখুনগর্ভাবস্থায় যেসব খাবার এড়িয়ে চলতে হবে সেগুলোর তালিকা পেতে আমাদের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা আর্টিকেলটি পড়ুনমানসিক সাপোর্ট দিনআশেপাশের অনেকের কাছ থেকেই এসময়ে নানান ধরনের কথাবার্তা শুনে শিশুর মায়ের মানসিক চাপ বেড়ে যেতে পারে সেক্ষেত্রে আপনি পাশে থেকে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করুন তাকে সাহসসমর্থন ও ভরসা দিন তার ভালো লাগে এমন কাজ করার চেষ্টা করুনদুজন বাড়ির আশেপাশের কোনো খোলামেলা জায়গায় কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করে আসতে পারেন হাঁটতে হাঁটতে পুরনো কোনো মধুর স্মৃতির কথা ভাবতে পারেন এতে মনের ভার কিছুটা হালকা হয়ে আসতে পারেনিজেদের মধ্যে ঝগড়াঝাঁটি হলে আপনি এসময়ে মাথা ঠাণ্ডা রাখার চেষ্টা করুন শিশুর মা রাগ করলেও আপনি রাগ না করে তাকে বোঝার এবং বোঝানোর চেষ্টা করুন যেকোনো সমস্যা দুইজনে মিলেমিশে সমাধানের চেষ্টা করুন অ্যানোমালি স্ক্যান করিয়ে ফেলুনসাধারণত গর্ভাবস্থার ১৮–২২তম সপ্তাহের মধ্যে একটি আলট্রাসনোগ্রাফি পরীক্ষা করতে হয় এর নাম অ্যানোমালি স্ক্যান এই পরীক্ষার সাহায্যে গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটি থাকলে তা খুঁজে বের করা যেতে পারে পাশাপাশি শিশু কীভাবে বেড়ে উঠছে তাও জানা যায় এখনো না করিয়ে থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে এই সপ্তাহেই পরীক্ষাটি করে ফেলুনশিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো নিয়ে জানাশোনা শুরু করুনজন্মের পর থেকে ৬ মাস বয়স পর্যন্ত মায়ের বুকের দুধ শিশুকে প্রয়োজনীয় সবটুকু শক্তি ও পুষ্টির যোগান দেয়[১] পাশাপাশি মায়ের অনেকগুলো স্বাস্থ্য জটিলতার সম্ভাবনা কমে যেমন উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস ও স্তন ক্যান্সার[২]যদি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকেন তাহলে এখন থেকেই বুকের দুধ খাওয়ানোর নিয়মগুলো নিয়ে জানাশোনা শুরু করতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান এগুলো গর্ভের শিশুর ব্রেইন হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে[৩][৪] পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক কিছু স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু মাথা থেকে পায়ের পাতা পর্যন্ত প্রায় ২৭৮ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় একটি মিষ্টি আলুর সমান তার ওজন এখন প্রায় ৪৩০ গ্রামছোট্ট শিশুর মাথায় এখন চুল আছেশিশুর চেহারা দিন দিন আরও বিকশিত হচ্ছে চোখনাককান ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে তার মাথায় এখন চুল গজিয়েছে[৬] দুই চোখের ওপরে ছোটো ছোটো ভ্রু আছে[৭]শিশুর হার্ট খুব দ্রুত স্পন্দিত হচ্ছেআমাদের হার্ট সাধারণত এক মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার বিট করে গর্ভাবস্থায় শিশুর হার্টের গতি প্রথমে বাড়ে তারপর কমে আসতে থাকেশিশুর বয়স যখন সাত সপ্তাহ ছিল তখন তার হার্ট মিনিটে প্রায় ১০০ বার করে স্পন্দিত হত[৮] তারপর গতি বাড়তে বাড়তে দশম সপ্তাহের দিকে মিনিটে প্রায় ১৬০ বার করে স্পন্দন করত[৯] এরপর গর্ভের শিশুর হার্টের গতি কমতে শুরু করেএই সময়ে এসে শিশুর ছোট্ট হার্ট মিনিটে প্রায় ১৪০ বার করে স্পন্দিত হচ্ছে[১০] পরবর্তীতে জন্মের কাছাকাছি সময়ে আপনার শিশুর হার্ট মিনিটে প্রায় ১৩০ বার করে স্পন্দিত হবে[১১]অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের পরিমাণ বাড়ছেছোট্ট শিশুটি গর্ভের ভেতরে পানির মতো এক ধরনের তরল পদার্থের মধ্যে আছে ডাক্তারি ভাষায় এই তরল পদার্থকে বলা হয় অ্যামনিওটিক ফ্লুইড এই অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের পরিমাণ দিন দিন বাড়ছে শিশুর বয়স যখন ১২ সপ্তাহ তখন এর পরিমাণ ছিল মাত্র ৩০ মিলিলিটারের কাছাকাছি[১২] এখন তা বেড়ে প্রায় ৪৫০ মিলিলিটার হয়ে গেছে বাড়তি ওজনের উৎস গর্ভের ছোট্ট শিশু ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠার কারণে গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন বেড়ে যায় এ ছাড়াও এসময়ে আপনার শরীরের বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে যা আপনার ওজন বাড়ায় যেমন শরীরে রক্ত ও পানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া চর্বি বা ফ্যাট জমা হওয়া স্তন ও জরায়ুর আকার বেড়ে যাওয়া প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল সৃষ্টি হওয়া গর্ভে শিশুকে ঘিরে রাখার তরল (অ্যামনিওটিক ফ্লুইড) জমা হওয়া[১৪]গর্ভাবস্থার কোন মাসে কতটুকু ওজন বাড়া উচিত আদর্শ ওজন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে করণীয় কী—এসব প্রশ্নের সঠিক উত্তর পেতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনশোয়াবসা থেকে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ানোহঠাৎ করে চেয়ারে বসা অথবা বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে দ্রুত দাঁড়িয়ে যাবেন না এতে আপনার ব্রেইনে রক্ত সরবরাহ কমে গিয়ে মাথা ঘুরাতে পারে[১৫] তাই বসা অথবা শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে ওঠার সময়ে ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়ানোর কথা মাথায় রাখবেন মাথা ঘুরানোর অন্যান্য কারণ ও ঘরোয়া সমাধান জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনবুকের দুধ খাওয়ানোর উপকারিতাজন্মের পর মায়ের বুকের দুধ শিশুর জন্য সেরা খাবার প্রথম ৬ মাসের জন্য শিশুর যতটুকু শক্তি ও পুষ্টি প্রয়োজন মায়ের বুকের দুধ তার সবটুকুই যোগান দেয়[১৬] এই সময়ে আলাদা করে কোনো খাবার কিংবা পানি প্রয়োজন হয় নাবুকের দুধে অ্যান্টিবডি থাকে যা শিশুকে অনেকগুলো রোগবালাই থেকে সুরক্ষিত রাখে গবেষণায় দেখা গেছে যে বুকের দুধ খাওয়ানো শিশুরা বুদ্ধির পরীক্ষায় বেশি ভালো রেজাল্ট করে[১৭] বড় হওয়ার পর অতিরিক্ত ওজন ও ডায়াবেটিসের মতো স্বাস্থ্য জটিলতার ঝুঁকি কম থাকে[১৮][১৯]শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে তা মায়ের উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস স্তন ক্যান্সার ও ওভারিয়ান বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারের ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করতে পারে[২০] তাই এখন থেকেই এসব বিবেচনা করে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারে মানসিক প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করতে পারেনমাতৃত্বকালীন ছুটিআপনি যদি চাকরি করেন তাহলে আপনার কর্মক্ষেত্রের ম্যাটারনিটি লিভ বা মাতৃত্বকালীন ছুটির নিয়মকানুন এখনই জেনে রাখুন গর্ভকালীন ও প্রসব পরবর্তী সময়ে কতদিন ছুটি পেতে পারেন সেসময় পুরো বেতন পাবেন কি না অবৈতনিক ছুটির সুযোগ আছে কি না এবং থাকলে সেটা সর্বোচ্চ কতদিনের জন্য ছুটির আবেদন করতে কী কী কাগজ প্রয়োজন কমপক্ষে কতদিন আগে আবেদনপত্র জমা দিতে হবে—এসব বিস্তারিত জেনে নিনছুটির নিয়মকানুনের একটা লিখিত কপি আপনার কাছে রাখুন সেই অনুযায়ী প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এখন থেকে সংগ্রহ করে রাখুন সম্ভব হলে আগেভাগেই ছুটির আবেদন করে রাখুনঅন্যান্য লক্ষণএ সপ্তাহেও আগের সপ্তাহের মতো আপনার যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—ক্লান্তি ও ঘুমের সমস্যাত্বকে ফাটা দাগ অথবা স্ট্রেচ মার্কদাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়াপাইলসপেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশে ব্যথা হওয়ামাথা ব্যথানাক থেকে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা ও কোষ্ঠকাঠিন্যবদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করাবেশি গরম লাগাহাত–পা ফুলে যাওয়াপ্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশনযোনিপথে ইনফেকশনমুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়াতৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়াচুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন—ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা স্তনে ব্যথা এবং বোঁটা থেকে দুধের মতো তরল বের হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে পরিমাণমতো তৈলাক্ত মাছ খেতে সাহায্য করুনআমরা নবম সপ্তাহে মাছ খাওয়ার কথা আলোচনা করেছিলাম গর্ভবতী মা নিয়মিত মাছ খেলে শিশুর ব্রেইন ভালো হয় আইকিউ বাড়ে কথাবার্তায় পটু হয় ও সবমিলিয়ে বুদ্ধিবৃত্তি নানাভাবে বিকশিত হয় বলে গবেষণায় পাওয়া গিয়েছেমাছে যে পুষ্টি উপাদান পাওয়া যায় তা গর্ভের শিশুর ব্রেইন ও চোখের রেটিনা গঠনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তাই শিশুর মায়ের পর্যাপ্ত পরিমাণে মাছ খাওয়া হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখতে পারেনআপনার ওপর যদি বাজার করার দায়িত্ব থাকে তাহলে নিয়মিত মাছ কিনে আনুন এমন পরিমাণে মাছ কিনবেন যেন শিশুর মায়ের সপ্তাহে অন্তত ৩০০ গ্রামের মতো মাছ খাওয়া হয় কেনার সময়ে এক ভাগ সাধারণ মাছ আরেক ভাগ ইলিশ চাপিলা অথবা পুঁটির মতো তৈলাক্ত মাছ কেনার চেষ্টা করবেন পরিবারের অন্য কেউ বাজার করলে তার সাথে এ নিয়ে আলাপ করবেনমাথা ঘুরানো কমাতে কিছু বিষয় খেয়াল রাখুনমাথা ঘুরানোর সমস্যা কমাতে আপনি ছোটো ছোটো কিছু সাহায্য করতে পারেন উপুড় হয়ে কোনো কাজ করলে বা লম্বা সময় দাঁড়িয়ে থাকলে এই সমস্যা আরও বাড়তে পারে তাই শিশুর মায়ের যদি উপুড় হয়ে বা অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে কোনো কাজ করা লাগে আপনি সেই কাজের দায়িত্ব নিয়ে নিতে পারেন নিচে কোনো কিছু পড়ে থাকলে আপনি সেটি তুলে দিয়ে সাহায্য করতে পারেন জুতা পরার সময়ে তাকে একটি চেয়ার অথবা টুল এগিয়ে দিয়ে সাহায্য করতে পারেনডেলিভারির জন্য প্রস্তুতি শুরু করে দিনআপনাদের সন্তানের জন্ম হতে আরও কয়েক মাস বাকি আছে তারপরও বিভিন্ন ব্যস্ততায় সময়টা হয়তো খুব তাড়াতাড়ি কেটে যাবে তাই এখন থেকেই অল্প অল্প করে ডেলিভারির জন্য প্রস্তুতি নিন কোন হাসপাতালে ডেলিভারি হবে সঙ্গীকে কীভাবে সেখানে নিয়ে যাবেন সাথে কে কে যাবে কী কী নিতে হবে—এসব নিয়ে দুজন মিলে আলোচনা শুরু করতে পারেনসিদ্ধান্ত নেওয়ার সময়ে শিশুর মায়ের মতামত এবং তার স্বস্তিকে প্রাধান্য দিন প্রতিদিন কমপক্ষে ৪০০ গ্রাম ফলমূল ও শাকসবজি খান গর্ভবতী মায়ের খাবার থেকেই মূলত গর্ভের শিশুর প্রয়োজনীয় পুষ্টি ও শক্তির যোগান আসে তাই সুষম খাদ্যাভ্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ পর্যাপ্ত ভিটামিন ও মিনারেল পেটে প্রতিদিন অন্তত ৪০০ গ্রাম ফলমূল ও শাকসবজি খাবেনপ্রসব নিয়ে খোঁজখবর নেওয়া শুরু করুন নরমাল ডেলিভারি ছাড়াও সাইড কাটা বা এপিশিওটোমি সিজার সিজার হওয়ার পরে নরমাল ডেলিভারি কিংবা ভেন্টুস ও ফোরসেপসএর মতো বিশেষ ডেলিভারি পদ্ধতিগুলো নিয়ে এখন থেকেই একটু একটু করে জানাশোনা শুরু করতে পারেন এসব নিয়ে প্রয়োজনীয় তথ্য জানা থাকলে ডেলিভারির জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত হওয়া সহজতর হবেক্যালসিয়াম ও আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান বিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান এগুলো গর্ভের শিশুর ব্রেইন হাড় ও অন্যান্য অঙ্গ স্বাভাবিকভাবে গড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে[১][২] পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ২৮৯ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় একটি পেঁপের সমান তার ওজন এখন ৫০০ গ্রামের কাছাকাছিছোট্ট শিশু চোখ নাড়াতে পারেআপনার ছোট্ট শিশু এখন দ্রুত চোখ নাড়াতে শুরু করেছে আগে সে ধীরে ধীরে চোখ নাড়াতে পারতো তার চোখ দুটো এখনো বন্ধ অবস্থায় আছে—চোখের পাতা এখনো তার চোখ দুটোকে ঢেকে রেখেছে ত্বকের বিভিন্ন স্তর ও লোমকূপ তৈরি হচ্ছেশিশুর ত্বক বা চামড়ার বিভিন্ন স্তর তৈরি হচ্ছে ত্বকে ছোটো ছোটো লোমকূপ পরিণত হচ্ছে হাতের তালু আর পায়ের তালু ছাড়া প্রায় সব জায়গাতেই লোমকূপ তৈরি হবে সাথে সাথে শিশুর গায়ে নরম তুলতুলে লোমের আবরণ তৈরি হয়েছে এই তুলতুলে লোমকে ডাক্তারি ভাষায় ল্যানুগো বলে শিশুর দাঁত তৈরি হচ্ছে মাড়িতে দুধ দাঁতের সাথে আরেক সারি দাঁত তৈরির কাজ এগিয়ে যাচ্ছে[১৩] পরবর্তীতে জন্মের পর তার দুধ দাঁত যখন পড়ে যাবে তখন এই দাঁতের সারি ধীরে ধীরে মাড়ি ভেদ করে বের হয়ে আসবে কমপক্ষে ৪০০ গ্রাম ফল ও শাকসবজিআপনার এখন আগের চেয়ে বেশি ক্ষুধা লাগতে পারে ক্ষুধা মেটাতে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন সবসময় একটা স্বাস্থ্যকর ও সুষম ডায়েট মেনে চলার চেষ্টা করবেন প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কমপক্ষে ৪০০ গ্রাম ফলমূল ও শাকসবজি রাখার চেষ্টা করুন এসব খাবার থেকে আপনার অনেক ধরনের পুষ্টির চাহিদা মিটবে শিশুও গর্ভে সুস্থভাবে বেড়ে উঠবেফল ও শাকসবজিতে থাকা ফাইবার পেট ভরা রাখতে খাবার হজম করতে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবে এসবের পাশাপাশি পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি খাবেনগর্ভাবস্থায় কোন খাবারগুলো খাওয়া উচিত আর কোনগুলো এড়িয়ে চলা উচিত জানতে আমাদের তৈরি করা এই খাবার তালিকাটি দেখে নিতে পারেনডেলিভারির বিভিন্ন পদ্ধতিবেশিরভাগ নারীই ঝামেলাবিহীন নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে প্রসব করার পরিকল্পনা করেন তবে বিভিন্ন কারণে সাইড কাটা সিজার সিজারপরবর্তী নরমাল ডেলিভারি কিংবা ভেন্টুস ও ফোরসেপসএর মতো বিশেষ ডেলিভারি পদ্ধতির সাহায্য নেওয়ার প্রয়োজন হতে পারেবিভিন্ন পদ্ধতি নিয়ে এখন থেকেই জানাশোনা শুরু করুন এতে ডেলিভারি সংক্রান্ত বিষয়ে মানসিক প্রস্তুতি থাকবে ডাক্তার কোনো কারণে বিশেষ ডেলিভারি পদ্ধতি সুপারিশ করলে ঘাবড়ে যাবার সম্ভাবনা কমবে এসব নিয়ে মাথায় কোনো প্রশ্ন ঘোরাঘুরি করলে সেগুলো লিখে রাখুন চেকআপের সময়ে ডাক্তারের কাছ থেকে বিস্তারিত উত্তর জেনে নিনবিস্তারিত জানতে ডেলিভারি নিয়ে আমাদের লেখাগুলো পড়তে পারেনশিশুর জন্য কেনাকাটাআপনাদের অনাগত সন্তানের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্রের তালিকা তৈরি করা শুরু করে দিন ছোট্ট ছোট্ট আরামদায়ক জামাকাপড় মোজা ডায়াপার সঠিক মাপের কট বা ছোটো খাট খাটের তোষক বা ম্যাট্রেস খেলনা ত্বক পরিচর্যার পণ্য—এমন ছোটোবড় অসংখ্য জিনিস হয়তো কিনতে হবেএখন থেকেই কয়েকটা করে জিনিস কেনাকাটা করা শুরু করতে পারেন কাজের ফাঁকে মাঝে মাঝে এসব কেনাকাটা করতে সঙ্গীর সাথে একত্রে বেরিয়ে পড়তে পারেন অথবা অনলাইনেও বিভিন্ন জিনিস অর্ডার দিতে পারেনআর্থিক প্রস্তুতিনরমাল ডেলিভারির মাধ্যমে কোনো ঝামেলা ছাড়াই একটা সুস্থ শিশু পৃথিবীতে আসবে—অনেকেই এমনটা চান আপনিও হয়তো সেই অনুযায়ী আর্থিক প্রস্তুতি নিয়ে রেখেছেন তবে ডেলিভারির সময়ে আপনার ও অনাগত শিশুর সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে জরুরি ভিত্তিতে অপারেশনের প্রয়োজন হতে পারেআনুষঙ্গিক ঔষধপত্র বিশেষায়িত চিকিৎসা এমনকি ক্ষেত্রবিশেষে আইসিইউ বাবদ হাসপাতালের খরচ অনেকখানি বেড়ে যেতে পারে তাই এখন থেকেই অপারেশন ও অন্যান্য পদ্ধতির খরচ কেমন হতে পারে সেসব সম্পর্কে বিস্তারিত জানার চেষ্টা করুনএ ছাড়া নতুন শিশুর আগমনের সাথে তার দেখভালের বিভিন্ন জিনিস কেনাকাটার প্রয়োজন হবেই এসব বাবদ আগামী দিনগুলোতে খরচ বেড়ে যেতে পারে এসব বিবেচনা করে এখন থেকে সেই অনুযায়ী টাকাপয়সা জমানো শুরু করে দিনঅন্যান্য লক্ষণএ সপ্তাহেও আগের সপ্তাহের মতো আপনার যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—ক্লান্তি ও ঘুমের সমস্যা ত্বকে ফাটা দাগ অথবা স্ট্রেচ মার্ক দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পাইলস পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশে ব্যথা হওয়া মাথা ব্যথা নাক থেকে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা ও কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা বেশি গরম লাগা মাথা ঘুরানো হাত–পা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন যোনিপথে ইনফেকশন মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়াতৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়াচুল ঘন ও ঝলমলে হওয়া এ ছাড়া গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের কিছু লক্ষণ থেকে যেতে পারে যেমন—ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারেবমি বমি ভাবঅদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা যেমন মাটিতীব্র ঘ্রাণশক্তিস্তনে ব্যথা এবং বোঁটা থেকে দুধের মতো তরল বের হওয়াসাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াযোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে ছোট্টমণির সাথে কথা বলুনআপনাদের শিশু এখন বাইরের শব্দ শুনতে পায় তাই তার সাথে নিয়মিত কথা বলার চেষ্টা করুন সময় পেলেই তার সাথে গল্প জুড়ে দিন তাকে গান গেয়ে শোনাতে পারেন এতে করে আপনার ও আপনার শিশুর মধ্যে ভালোবাসার বন্ধন তৈরি হবেশিশুর জন্য কেনাকাটা শুরু করতে পারেনএসময় থেকেই আপনাদের ছোট্ট সোনামণির জন্য কেনাকাটা শুরু করে দিতে পারেন শিশুর মায়েরও এসময়ে নতুন করে ঢিলেঢালা কাপড় ও অন্যান্য জিনিসপত্রের প্রয়োজন হতে পারে তাই দুজনে মিলে এসব কেনাকাটা করতে যেতে পারেন বাইরে কেনাকাটা করতে গেলে যদি শপিং ব্যাগ ভারী হয়ে যায় তাহলে আপনি সেটা বহন করার দায়িত্ব নিতে পারেন এ ছাড়া অনলাইনেও কিছু কেনাকাটা সেরে ফেলতে পারেনটাকাপয়সা জমাতে শুরু করুনঅনেকেই ধরে নেন যে নরমাল ডেলিভারির মাধ্যমেই সন্তান প্রসব হবে এবং সেই অনুযায়ী আর্থিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখেন তবে ডেলিভারির সময়ে গর্ভের শিশু ও শিশুর মায়ের সার্বিক স্বাস্থ্যের ওপর নির্ভর করে জরুরি ভিত্তিতে সিজার করার প্রয়োজন হতে পারেএ ছাড়াও শিশুর মা ও শিশুর জন্য বিভিন্ন প্রয়োজনীয় জিনিস কেনাকাটা করতে হবে এসব মাথায় রেখে এখন থেকেই টাকাপয়সা জমানো শুরু করে দিনএ মাসের চেকআপ হয়েছে কিএ মাসের চেকআপ করানো না হয়ে থাকলে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চেকআপের ব্যবস্থা করতে সাহায্য করুন সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আপনাদের গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহ পর্যন্ত মাসে একবার করে চেকআপে যেতে হবে এরপর ৩৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার তারপর প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রতি সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবেনিয়মিত চেকআপে যাওয়া আপনার ও গর্ভের শিশুর সুস্থতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ চেকআপে কোনো সমস্যা ধরা পড়লে দ্রুত পরীক্ষানিরীক্ষা করে সেটার চিকিৎসা শুরু করা যাবে চিনিযুক্ত খাবার খাওয়া কমিয়ে দিন চিনিযুক্ত খাবার (যেমন মিষ্টি পায়েস মিষ্টি দই সেমাই কেক) বেশি খেলে আপনার ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যেতে পারে গর্ভকালীন সময়ে ওজন অতিরিক্ত বাড়লে তা নানান ধরনের গর্ভকালীন জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে তাই এসব খাবার যতটা সম্ভব কম খাওয়ার চেষ্টা করুনগর্ভের শিশুর নড়াচড়া না বুঝলে ডাক্তারকে জানান এ সপ্তাহের মধ্যে যদি আপনি গর্ভে শিশুর নড়াচড়া অনুভব করতে না পারেন তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারকে এই বিষয়ে জানান কোনো কারণে শিশুর নড়াচড়া কমে গেছে মনে হলেও দেরি না করে ডাক্তারকে জানাবেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান বিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে[১][২] পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৩০ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় একটা ডাবের সমান তার ওজন এখন প্রায় ৬০০ গ্রামশিশুর ত্বক দেখতে লালচে গোলাছোট্ট শিশুর ত্বকের রঙ এখন লালচে গোলাপি[৪] ত্বকের নিচে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র রক্তনালীতে থাকা রক্তের কারণে ত্বকের রঙ এমন লালচে হয়[৫] তার ত্বক এখনো বেশ পাতলা ও কুঁচকানো অবস্থায় আছে সময়ের সাথে সাথে ত্বকের নিচে চর্বির স্তর জমে ত্বক মসৃণ হয়ে উঠবেকানের লতি তৈরি হয়ে যাচ্ছে গত কয়েক মাস ধরে শিশুর মাথার দুই পাশে ছোটো ছোটো দুটো কান তৈরি হচ্ছে [৬] কানের বিভিন্ন অংশের মধ্যে কানের লতিগুলো সবশেষে তৈরি হয় এই সপ্তাহের মধ্যেই আপনার সোনামণির ছোটো ছোটো কানের লতি তৈরি হয়ে যাবে [৭]শিশুর ওজন বাড়ছে এই কয়েক সপ্তাহে শিশুর ওজন বেশ অনেকখানি বাড়বে [৮] তার হাতপা ও মাথার অনুপাতে আরও সামঞ্জস্য আসবে [৯] তবে এখনো সে বেশ ছোটোখাটো আপনার গর্ভে পরম যত্নে সে ধীরে ধীরে বেড়ে উঠছে গর্ভের শিশুর নড়াচড়াআপনার গর্ভের শিশুর নড়াচড়া বুঝতে শুরু করার পর থেকে তার নড়াচড়ার ধরন সম্পর্কে খেয়াল রাখার চেষ্টা করুন গর্ভের শিশু যদি কোনো কারণে অসুস্থ হয়ে পড়ে তার নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কমে যায় যত তাড়াতাড়ি এসব পরিবর্তন খেয়াল করা যায় ততই ভালোআপনার যদি মনে হয় যে গর্ভের শিশু স্বাভাবিকের চেয়ে কম নড়াচড়া করছে অথবা গর্ভধারণের ২৪তম সপ্তাহের মধ্যেও যদি শিশুর কোনো ধরনের নড়াচড়া অনুভব না করেন তাহলে দেরি না করে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেচিনিযুক্ত খাবার কমিয়ে ফেলা এই সময়ে চিনিযুক্ত পানীয় ও খাবার খাওয়া কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করুন এসব খাবার সাধারণত উচ্চ মাত্রায় ক্যালরিযুক্ত হয় তাই চিনিযুক্ত পানীয় ও খাবার বেশি খেলে আপনার ওজন অনেকখানি বেড়ে যেতে পারেগর্ভকালীন সময়ে ওজন অতিরিক্ত বাড়লে সেটি আপনার ও গর্ভের শিশু উভয়েরই নানান ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে যেমন গর্ভকালীন ডায়াবেটিস অস্বাভাবিকভাবে বড় আকারের শিশু জন্মানো ডেলিভারির সময়ে জটিলতা এবং সিজার অপারেশনের প্রয়োজন হওয়া[১২] [১৩]এ ছাড়াও চিনিযুক্ত পানীয় ও খাবার খাওয়ার কারণে আপনার দাঁত ক্ষয় হয়ে যেতে পারে[১৪] তাই মিষ্টি পায়েস পুডিং ফিরনি মিষ্টি দই কেক পেস্ট্রি কিংবা চিনিযুক্ত যেকোনো খাবার যতটা সম্ভব অল্প পরিমাণে খাওয়ার চেষ্টা করুনজন্মের পর স্কিনটুস্কিন কন্ট্যাক্টজন্মের সাথে সাথেই ছোট্ট শিশুর ত্বক আপনার ত্বকের সংস্পর্শে রাখার অনেকগুলো উপকারিতা আছে ডাক্তারি ভাষায় মায়ের ত্বক ও শিশুর ত্বকের এই নিবিড় সংস্পর্শকে বলে স্কিনটুস্কিন কন্ট্যাক্টএই সংস্পর্শ শিশুর হৃৎস্পন্দন ও শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে[১৫] নবজাতক শিশুর শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখে এবং বাইরের নতুন পরিবেশে তাকে সহজে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে এই সংস্পর্শের ফলে বুকের দুধ খেতেও শিশুর আগ্রহ বাড়েতাই জন্মানোর পর ছোট্ট সোনামণিকে আপনার ত্বকের সংস্পর্শে রাখার চেষ্টা করুন[১৭] আগে থেকে এ বিষয়ে কথা বলে রাখলে প্রসবের পর পরই আপনার ডাক্তার অথবা নার্স আপনাকে এই বিষয়ে সহযোগিতা করতে পারবেনছোট্টমণির নাম ঠিক করাছোট্টমণিকে কী নামে ডাকবেন সেটা নিয়ে ভেবেছেন কি আপনাদের দেওয়া নাম তার সারা জীবনের পরিচয় হয়ে দাঁড়াবে কখনো কখনো এই গুরুদায়িত্ব পালন করার কথা ভেবে মনে দুশ্চিন্তাও ভর করতে পারেনামের অর্থ কেমন হলে কিংবা কোন ভাষার নাম হলে ভালো হয়—এসব এখন থেকেই ভেবে রাখুন শিশুর বাবা অন্যান্য আত্মীয়স্বজন ও বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন নাম নিয়ে আলোচনা করুন সেসব আলোচনা থেকেই হয়তো ভবিষ্যতের সোনামণির জন্য সেরা নামটা খুঁজে নিতে পারবেনঅর্থসহ বিভিন্ন ভাষায় ছেলে ও মেয়ে শিশুর নাম পেতে আমাদের অ্যাপের বেবি নেইমস অংশটা ঘুরে দেখতে পারেনঅন্যান্য লক্ষণএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—ক্লান্তিঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা নাক দিয়ে রক্ত পড়া পেট ফাঁপা লাগা ও কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা পা কামড়ানো অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা মাথা ঘুরানো প্রস্রাবের ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়াচুল ঘন ও ঝলমলে হওয়া এ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন—ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারেবমি বমি ভাবঅদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা যেমন মাটিতীব্র ঘ্রাণশক্তিস্তনে ব্যথা এবং বোঁটা থেকে দুধের মতো তরল বের হওয়াসাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াযোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই দ্রুত ডাক্তার দেখাবেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটা কোনো মারাত্মক কারণে হয় না তবে কখনো কখনো এটা গর্ভপাতের একটা লক্ষণ হতে পারে চিনিযুক্ত খাবার কেনা কমিয়ে ফেলুনএ সময়ে আপনার সঙ্গী চিনিযুক্ত খাবার বেশি খেলে তার ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যেতে পারে গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত ওজন মা ও শিশু উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর[১৮][১৯] তাই এখন আপনিও বাড়িতে অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার কেনা এড়িয়ে চলুন যেমন মিষ্টি ও মিষ্টি দইআবার অনেকসময় বাড়িতে মেহমান আসার সময়ে মিষ্টি নিয়ে আসতে পারে যা পরের কয়েকদিন ধরে বাসায় খাওয়া হতে থাকে তখন শিশুর মায়ের জন্য মিষ্টি এড়িয়ে চলা কঠিন হতে পারেজন্মের পর পর শিশুর সাথে মায়ের ত্বকের নিবিড় সংস্পর্শ সম্পর্কে জানুনজন্মের পর পরই শিশুর ত্বক তার মায়ের ত্বকের সরাসরি সংস্পর্শে থাকা জরুরি[২০] এটা শিশুকে নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নিতে সাহায্য করে তাই প্রসবের পরে শিশুকে মায়ের বুকের ওপর এমনভাবে রাখতে বলা হয় যাতে দুজনের ত্বক সরাসরি সংস্পর্শে থাকে একে বলে স্কিনটুস্কিন কন্ট্যাক্টএই বিষয়টা আপনারও জানা থাকা প্রয়োজন কেননা প্রসবের ঝক্কি পোহানোর পর স্কিনটুস্কিন কন্ট্যাক্ট করার কথা শিশুর মায়ের খেয়াল নাও থাকতে পারে তখন আপনি ডাক্তার অথবা নার্সকে অনুরোধ করে শিশুকে তার মায়ের ত্বকের সংস্পর্শে রাখার ব্যবস্থা করতে পারেনশিশুর নাম রাখা নিয়ে চিন্তাভাবনা করুনছোট্টমণির নাম কী রাখবেন সেটা এখন থেকেই চিন্তা করতে পারেন কোন ভাষার নাম রাখতে চান নামের অর্থ কেমন হলে ভালো হয়—এমন খুঁটিনাটি ব্যাপারগুলো এখন থেকেই ভাবা শুরু করুনঅর্থসহ বিভিন্ন ভাষায় ছেলে ও মেয়ে শিশুর নাম পেতে আমাদের অ্যাপের বেবি নেইমস অংশটা ঘুরে দেখতে পারেন শিশুর মা আপনার পরিজন ও বন্ধুদের কাছ থেকে আইডিয়া নিতে পারেন ইন্টারনেটেও ঘেঁটে দেখতে পারেন এসব থেকেই হয়তো সোনামণির জন্য সেরা নামটা খুঁজে পেয়ে যাবেননাম নিয়ে মনোমালিন্য হলে যা করবেনশিশুর নাম হবে একটাই এই নাম নিয়ে আপনার ও শিশুর মায়ের মধ্যে ভিন্নমত থাকলে সেখান থেকে মনোমালিন্য সৃষ্টি হতে পারে নাম নিয়ে আনন্দউচ্ছ্বাসের মাঝে তিক্ততা এসে ভর করতে পারে দুজনের পছন্দের দুটো নামই শিশুর পুরো নামের অংশ করা যায় কি না সেটা ভেবে দেখতে পারেন কিছু ক্ষেত্রে এই অপশন হয়তো মানানসই হবে না সেক্ষেত্রে দুজনের বাছাই করা নামের মধ্যে কেবল একটা নামই হয়তো শিশুর ভবিষ্যৎ নাম হয়ে দাঁড়াবে অপরজনকে ছাড় দিতে হবেনামের হিসেব কষার আগেই আপনি ও আপনার সঙ্গী এই বিষয়গুলো নিয়ে খোলাখুলি কথা বলে মানসিক প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন এতে নাম বাছাই করার প্রক্রিয়াটা শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত আপনাদের জন্য একটা সুন্দর স্মৃতি হয়ে থাকবে বুকের দুধ খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতি শিখুন বুকের দুধ খাওয়ানোর সঠিক নিয়মগুলো এখন থেকে জানা শুরু করুন এতে করে প্রসবের পর পরই আপনি ছোট্ট সোনামণিকে ভালোভাবে খাওয়ানো শুরু করে দিতে পারবেন ওজিটিটি পরীক্ষা করুন আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে কি না সেটি নির্ণয়ের জন্য গর্ভাবস্থার ২৪তম–২৮তম সপ্তাহে ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট বা ওজিটিটি নামের একটি পরীক্ষা করতে হয় বাইরে থেকে সাধারণত এই রোগের কোন লক্ষণ বোঝা যায় না[১] তাই পরীক্ষা করে রোগ হয়েছে কি না তা জেনে নেওয়া জরুরি নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট সেবন করুন বিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যেতে ভুলবেন না এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে[২][৩] পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৩৪৬ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় একটি আনারসের সমান তার ওজন এখন প্রায় ৬৬০ গ্রাম শিশু আরও ভালোভাবে কানে শুনতে শিখছে আপনার ছোট্ট শিশু দিন দিন আরও ভালোভাবে কানে শুনতে পাচ্ছে সে আপনার গলার স্বর কিংবা কোনো জোরালো শব্দ বা কোলাহলও শুনতে পারেকানে শোনার পাশাপাশি সেই শব্দের প্রতি সাড়াও দেয় শিশুর ফুসফুস পরিণত হচ্ছে এসময়ে শিশুর ফুসফুসের ভেতরে আরও অনেক ছোটো ছোটো শাখাপ্রশাখা সৃষ্টি হচ্ছেএসব ছোটো ছোটো কুঠুরির মতো শাখাপ্রশাখা পরবর্তীতে তাকে অক্সিজেন গ্রহণে সাহায্য করবে এভাবে তার ছোট্ট ফুসফুস শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার জন্য ধীরে ধীরে তৈরি হচ্ছে শিশু এখন ভালো পরিমাণে প্রস্রাব করে গর্ভে শিশু পানির মতো এক ধরনের তরল পদার্থের মধ্যে থাকেডাক্তারি ভাষায় এই তরল পদার্থকে বলা হয় অ্যামনিওটিক ফ্লুইড সে অল্প অল্প করে এই অ্যামনিওটিক ফ্লুইড গিলে নেয় এই তরল থেকে তার কিডনি প্রস্রাব তৈরি করে এবং শিশু সেই প্রস্রাব ত্যাগ করেতবে এই প্রস্রাবের প্রায় পুরোটাই পানি কারণ মায়ের গর্ভফুল বর্জ্য পদার্থ সরিয়ে নেয় শিশুর কিডনি এখন বেশ ভালো পরিমাণে প্রস্রাব তৈরি করে এবং এই প্রস্রাব আবার তার চারপাশের অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের মধ্যে গিয়ে জমা হয়এই অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ছোট্ট শিশুকে গর্ভের ভেতরে সুরক্ষিত রাখে ষষ্ঠ চেকআপ আরেকটা গর্ভকালীন চেকআপের সময় হয়ে এসেছে সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে প্রথম চেকআপের পর থেকে গর্ভকালীন ২৮ সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি মাসে একবার চেকআপ করা দরকার তাই এই মাসেও মনে করে সব প্রস্তুতি নিয়ে আপনার সঙ্গীসহ চেকআপে যান এই চেকআপে কী কী হতে পারে এবং কীভাবে প্রস্তুতি নিবেন সেসব জানতে গর্ভকালীন চেকআপ আর্টিকেলটি পড়ুন রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা গর্ভাবস্থার ২৪তম–২৮তম সপ্তাহের মধ্যে আপনাকে রক্ত পরীক্ষা ও প্রস্রাব পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হবে আগামী চেকআপের সময়েই এসব পরীক্ষার অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে আসতে কিংবা সুযোগ থাকলে একেবারে পরীক্ষা করিয়ে আসতে পারেন পরীক্ষায় আপনার রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ থেকে রক্তশূন্যতা আছে কি না সেটা নির্ণয় করা হবে সেই সাথে প্রস্রাব পরীক্ষা করে সেখানে প্রোটিন অথবা ইনফেকশনের চিহ্ন আছে কি না সেটা দেখা হবে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস ও ওজিটিটি পরীক্ষা গর্ভাবস্থায় আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যেতে পারে এই সমস্যাকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলে গর্ভাবস্থার যেকোনো সময়েই গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হতে পারেতবে দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে অর্থাৎ ৪র্থ থেকে ৯ম মাসে এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশিতাই গর্ভাবস্থার ২৪–২৮তম সপ্তাহের মধ্যে সাধারণত পরীক্ষা করে দেখা হয় গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে কি নাপরীক্ষার নাম হল ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট বা ওজিটিটি তাই এই সপ্তাহে কিংবা সামনের সপ্তাহগুলোতে আপনার ডাক্তার আপনাকে ওজিটিটি পরীক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেনবুকের দুধ খাওয়ানোর সঠিক পদ্ধতি সঠিকভাবে বুকের দুধ খাওয়ানোর উপায়গুলো রপ্ত করতে আপনার যেমন কিছুটা সময় লাগবে তেমনি ঠিকঠাক দুধ খাওয়া শিখতে ছোট্ট শিশুরও কিছুটা সময় লাগা স্বাভাবিক এজন্য এখন থেকেই বুকের দুধ খাওয়ানোর সঠিক নিয়মগুলো সম্পর্কে জেনে নিনকেননা প্রসবের পরপরেই বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হয় আর তখন আপনি শারীরিকভাবে ক্লান্ত থাকতে পারেন সেক্ষেত্রে ঐ মুহূর্তে নতুন করে এসব নিয়ম শিখতে গেলে তা আপনার ক্লান্তি আরও বাড়িয়ে দিতে পারেবুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য আপনি নিজে থেকে শিশুর মুখের ভেতরে স্তনের বোঁটা ঢুকিয়ে দিবেন না এমন করলে শিশুর দুধ খেতে অসুবিধা হতে পারে বরং ছোট্ট সোনামণিকে এমনভাবে রাখবেন যাতে তার নাক আপনার স্তনের বোঁটা বরাবর থাকে আর তার ঠোঁটের সাথে আপনার স্তনের বোঁটার ঘষা লাগে তখন শিশু নিজেই মুখ হা করে খুলে বুকের দুধ খেতে শুরু করবেবুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ে শিশুর মাথা ও শরীর সোজা এক লাইনে রাখবেন কেননা মাথা অথবা ঘাড় বাঁকা করে করে থাকলে দুধ গিলতে শিশুর কষ্ট হবে অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—ক্লান্তিঘুমের সমস্যাস্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগদাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়াপেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করাপাইলসমাথা ব্যথাকোমর ব্যথানাক দিয়ে রক্ত পড়াপেট ফাঁপা লাগাকোষ্ঠকাঠিন্যপা কামড়ানোঅল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করামাথা ঘুরানোহাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়াপ্রস্রাবের ইনফেকশনযোনিপথে ইনফেকশন হওয়ামুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়াতৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়াচুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন—ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারেবমি বমি ভাবঅদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা যেমন মাটিতীব্র ঘ্রাণশক্তিস্তনে ব্যথা এবং বোঁটা থেকে দুধের মতো তরল বের হওয়াসাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াযোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এটা গর্ভফুলের গুরুতর সমস্যার কারণে হতে পারে তাই এমন হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন ওজিটিটি পরীক্ষা সম্পর্কে জানুনকখনো কখনো গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস রোগ হতে পারে তবে বাইরে থেকে সাধারণত এই রোগের কোনো লক্ষণ বোঝা যায় না[১৭] একটা বিশেষ ধরনের রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এই রোগ ধরা যায় পরীক্ষার নাম হলো ওজিটিটি সাধারণত গর্ভাবস্থার ২৪–২৮তম সপ্তাহের মধ্যে এই পরীক্ষা করে দেখা হয়এই পরীক্ষা করানোর বিশেষ কিছু নিয়ম আছে সেগুলো জানতে আমাদের এই লেখাটি পড়তে পারেন কখন কোথায় ও কীভাবে এই পরীক্ষা করা হয় সেসব সম্পর্কে খোঁজ নিয়ে শিশুর মাকে সহায়তা করতে পারেন বুকের দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনশিশুর মা যদি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সিদ্ধান্ত নেন তাহলে আপনি তাকে কীভাবে সাহায্য করতে পারেন সেটা তার কাছ থেকে জেনে নিনশিশুকে কোন অবস্থানে দুধ খাওয়াতে হয় কীভাবে ধরতে হয় মা কীভাবে বসলে সবচেয়ে ভালো হয় দুধ খাওয়ানোর পর কীভাবে ঢেঁকুর তোলাতে হয়—এই বিষয়গুলো দুজনে এখন থেকেই একসাথে শিখে রাখতে পারেন এতে শিশুর জন্মের পর নানান চ্যালেঞ্জের মধ্যে তাকে খাওয়ানোর বিষয়টা হয়তো সহজ হয়ে আসবেআর যদি শিশুকে কোনো কারণে ফর্মুলা খাওয়াতে হয় তাহলে সেটা বানানো সংরক্ষণ ও খাওয়ানো সংক্রান্ত তথ্যগুলো এখন থেকেই জেনে রাখা শুরু করতে পারেন প্রতিদিনের ছোটোখাটো কাজে সাহায্য করুন এসময়ে বাড়ন্ত পেটের কারণে শিশুর মায়ের নড়াচড়া করতে কিছুটা অসুবিধা হতে পারে গর্ভকালীন নানান ধরনের শারীরিক সমস্যার জন্য হয়তো ঘরের অনেক কাজও তার জন্য অনেক কষ্টকর হয়ে যেতে পারে তাই ঘরের কাজে তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করুননীচে কিছু পড়ে গেলে মেঝে থেকে সেটি উঠিয়ে দিয়ে তাকে সাহায্য করতে পারেন সোফা কিংবা চেয়ারে বসার সময়ে পা দুটো উঁচু করে রাখার জন্য একটা ছোটো টুল এগিয়ে দিতে পারেন অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থেকে কোনো কাজ করতে হলে তার মাথা ঘুরাতে পারে যেমন রান্নাঘরে অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে রান্না করলে এমন হতে পারে তাই বেশি সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকার কাজগুলো আপনি করতে পারেন অথবা অন্য কারও সাহায্য নিতে পারেন প্রসবপরবর্তী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুন সন্তান জন্মানোর মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই পুনরায় গর্ভধারণ সম্ভব তাই প্রসবপরবর্তী সময়ে প্রতিবার সহবাসের সময়ে উপযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করুন প্রসবকালীন ব্যথা কমানোর উপায় সম্পর্কে জানুন আপনার নিকটস্থ হাসপাতালে প্রসববেদনা কমানোর জন্য সহজলভ্য যেসব ব্যবস্থা আছে সেসব সম্পর্কে আগে থেকে জেনে রাখুন যেমন গ্যাস সংমিশ্রণ ও এপিডুরাল অ্যানেস্থেসিয়া আয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান বিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৩৫৬ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় একটি ঝিঙ্গার সমান তার ওজন এখন প্রায় ৭৬০ গ্রাম জোরালো আওয়াজে শিশু চমকে যেতে পারে আশেপাশে জোরে কোনো আওয়াজ হলে গর্ভের ভেতরে শিশু চমকে উঠতে পারে তখন সে দ্রুত হাতপা ভেতরের দিকে টেনে নিতে পারে ছোট্ট শিশু আঙুল চুষতে পারে আপনার শিশু এরই মধ্যে আঙুল চুষতে শিখে গিয়েছেসে হয়তো এখন আপনমনে আপনার গর্ভের ভেতরে তার হাতের আঙুল চুষছে এই অভ্যাস পরবর্তীতে তাকে আপনার বুকের দুধ পান করার সময়ে সাহায্য করবে এ সপ্তাহের মধ্যে শিশুর ফুসফুস সারফ্যাকটেন্ট নামের এক ধরনের বিশেষ পদার্থ তৈরি করতে শুরু করে জন্মের পরে শিশুর শ্বাস নেয়ার জন্য এটি খুব গুরুত্বপূর্ণশিশুর ফুসফুস যাতে ভালোভাবে প্রসারিত হয়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাস নিতে পারে সেজন্য এই সারফ্যাকটেন্ট প্রয়োজনফুসফুসের ভেতরে এখনো ছোটো ছোটো শাখা–প্রশাখা তৈরির কাজ চলছে এখন থেকেই প্রসব ও প্রসব পরবর্তী দিনগুলোর যত্ন নিয়ে একটুআধটু ভাবা শুরু করতে পারেন দাঁতের যত্ন গর্ভকালীন সময়ে প্রায় ৬০–৭৫ নারীরা দাঁতের মাড়ির প্রদাহের সমস্যায় ভোগেনএমন হলে দাঁতের মাড়ি লাল হয়ে ফুলে যায় এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়তে পারে গর্ভকালীন সময়ে শরীরে হরমোনের পরিমাণের তারতম্যের জন্য আগামী সপ্তাহগুলোতে এই সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারেএ ছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে দাঁতের মাড়ির নির্দিষ্ট রোগের সাথে গর্ভের শিশুর অকাল প্রসব ও কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়ার যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে তাই এই সময়ে দাঁত ও মাড়ির রোগ প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত দিনে দুইবার দাঁত মাজার অভ্যাস করুন পাশাপাশি দিনে অন্তত একবার ফ্লস ব্যবহার করে আপনার দাঁতের মাঝে জমে থাকা ছোটো ছোটো খাবারের টুকরা পরিষ্কার করে ফেলুনএই সহজ দুইটি উপায়ে দাঁত পরিষ্কার রাখার মাধ্যমে আপনি গর্ভকালীন সময়ে দাঁতের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি দাঁত ও মাড়ির ইনফেকশন হওয়ার ঝুঁকি কমিয়ে আনতে পারেন প্রস্রাবের ইনফেকশন গর্ভাবস্থায় প্রস্রাব করার সময়ে যদি আপনার প্রস্রাবের রাস্তায় ব্যথা অথবা জ্বালাপোড়া হয় তা প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়ার লক্ষণ হতে পারে প্রস্রাবের সময়ে জ্বালাপোড়া ছাড়াও আপনার আরও কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন জ্বর আসা কিংবা গা গরম লাগা শরীরে কাঁপুনি হওয়া এবং তলপেটে ব্যথা হওয়াএসব লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন কেননা এই সময়ে প্রস্রাবের ইনফেকশন গর্ভের শিশুর জন্য মারাত্মক সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে প্রসব বেদনা কমানোর উপায়প্রসববেদনার কষ্ট কমানোর জন্য আপনি কী ধরনের ব্যথানাশক ব্যবস্থা নিতে ইচ্ছুক—সে বিষয়ে এখন থেকেই চিন্তাভাবনা শুরু করতে পারেন প্রসববেদনা কমানোর জন্য অনেক জায়গায় এক ধরনের গ্যাস ব্যবহার করা হয় যাতে ব্যথার তীব্রতা বেশ কমে এবং ব্যথা কিছুটা সহনীয় পর্যায়ে চলে আসতে পারেপ্রসববেদনার হাত থেকে রেহাই পাওয়ার আরেকটি উপায় হলো এপিডুরাল অ্যানেস্থেসিয়া এই পদ্ধতিতে আপনার পিঠের নীচের অংশে মেরুদণ্ড বরাবর একটি ইনজেকশনের মাধ্যমে চেতনানাশক ঔষধ দেওয়া হয় এ ছাড়াও ব্যথা কমানোর আরও বিভিন্ন উপায় আছেসব হাসপাতালে কিংবা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে সব ধরনের ব্যথা কমানোর পদ্ধতি থাকে না তাই আপনি যেখানে ডেলিভারি করানোর পরিকল্পনা করছেন সেখানে কী ধরনের সুযোগসুবিধা আছে সেসব সম্পর্কে এখন থেকে জানার চেষ্টা করুন প্রসব পরবর্তী জন্মনিরোধক পদ্ধতি গর্ভের সন্তান প্রসবের মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই আপনি পুনরায় গর্ভধারণ করতে পারেন আপনার শিশু নিয়মিত বুকের দুধপান করতে থাকলেও আপনি গর্ভবতী হতে পারেনএমনকি প্রসবের পর পুনরায় মাসিক শুরু হওয়ার আগেই আপনি আবারও গর্ভধারণ করে ফেলতে পারেন কেননা মাসিক শুরু হওয়ার প্রায় দুই সপ্তাহ আগে সাধারণত আপনার ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণু বের হয়ে আসে তাই পুনরায় মাসিক শুরু হওয়ার আগেও আপনি আবার গর্ভধারণ করতে পারেনসতর্ক না থাকলে কিছু বুঝে ওঠার আগেই আপনি আবারও গর্ভধারণ করতে পারেন অল্প সময়ের বিরতিতে পুনরায় গর্ভধারণ করলে তা নানান ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে[১৪] এজন্য প্রসবপরবর্তী সময়ে প্রতিবার সহবাসের ক্ষেত্রে এমনকি প্রথমবারের ক্ষেত্রেও জন্মনিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার করুনসেই সময়ে আপনার জন্য কোন ধরনের জন্মনিরোধক পদ্ধতি নিরাপদ হবে—সেসব জানতে আপনার ডাক্তারের পরামর্শ নিন পেটে ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক গর্ভাবস্থায় আপনার ত্বকে ফাটা ফাটা দাগ খেয়াল করতে পারেন গর্ভকালীন সময়ে অনেকেরই এমন হয় সাধারণত হরমোনের প্রভাব ত্বকে টান পড়াসহ বিভিন্ন কারণে এমন হয়সাধারণত শিশুর জন্মের পর এই দাগগুলো ধীরে ধীরে হালকা হয়ে আসে ফাটা দাগ প্রতিরোধ করতে কোনো তেল অথবা ক্রিমের কার্যকারিতা সম্পর্কে তেমন কোন নির্ভরযোগ্য প্রমাণ পাওয়া যায়নিএ সম্পর্কে আরও জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেন অন্যান্য লক্ষণ এ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—ক্লান্তিঘুমের সমস্যাস্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগপেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করাপাইলসমাথা ব্যথাকোমর ব্যথানাক দিয়ে রক্ত পড়ানাক ডাকা ও নাক বন্ধ থাকাপেট ফাঁপা লাগাকোষ্ঠকাঠিন্যবদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করাপা কামড়ানোঅল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করামাথা ঘুরানোহাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়াযোনিপথে ইনফেকশন হওয়ামুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়াতৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়াচুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এ সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন—ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারেবমি বমি ভাবঅদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা যেমন মাটিতীব্র ঘ্রাণশক্তিস্তনে ব্যথা এবং বোঁটা থেকে দুধের মতো তরল বের হওয়াসাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াযোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এটা গর্ভফুলের গুরুতর সমস্যার কারণে হতে পারে তাই এমন হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন ঘুমাতে যাওয়ার আগে দুজনেই দাঁত ব্রাশ করুন গর্ভাবস্থায় দাঁত ও মাড়ির যত্ন নেওয়া বিশেষভাবে জরুরি কারণ এসময়ে মাড়ি ফুলে যাওয়া ও মাড়ি থেকে রক্ত পড়া খুব কমনদাঁতের মাড়ির নির্দিষ্ট রোগের সাথে গর্ভের শিশুর নানান জটিলতার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে তাই দাঁতের যত্ন নিতে শিশুর মায়ের প্রতিদিন দুই বেলা করে দাঁত মাজা প্রয়োজনঘুম থেকে ওঠার পর ব্রাশ করা হলেও ঘুমাতে যাওয়ার আগে অনেকেরই ব্রাশ করার কথা মনে থাকে না রাতে ব্রাশ করার কথা শিশুর মাকে মনে করিয়ে দিতে পারেন সম্ভব হলে দুজনেই প্রতি রাতে একসাথে ব্রাশ করার অভ্যাস করতে পারেন তাহলে শিশুর মা রাতে ব্রাশ করার কথা ভুলে যাবেন না দাঁত ফ্লস করার নিয়ম শিখে নিন দিনে দুই বেলা দাঁত মাজার পাশাপাশি অন্তত একবার দাঁত ফ্লস করা বা খিলাল করা দরকার শিশুর মায়ের যদি নিয়মিত দাঁত ফ্লস করার অভ্যাস না থাকে সেক্ষেত্রে আপনি ফ্লস করার নিয়মগুলো শিখে তাকে দেখিয়ে দিতে পারেন অথবা দুজনে একসাথেই নিয়মগুলো শিখে নিতে পারেন আপনি নিজেও নিয়মিত দাঁত ফ্লস করার অভ্যাস করলে হয়তো শিশুর মা এটা চালিয়ে যেতে উৎসাহ পাবেগর্ভাবস্থায় দাঁত ও মাড়ির যত্নের অন্যান্য ঘরোয়া উপায় জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনপ্রসববেদনা উঠলে কী করবেন তা নিয়ে ভাবা শুরু করুন এখন থেকেই প্রসব ও প্রসব পরবর্তী দিনগুলোর যত্ন নিয়ে একটুআধটু ভাবা শুরু করতে পারেন প্রসববেদনা শুরু হয়ে যাওয়ার পরে আপনি কীভাবে সাহায্য করলে শিশুর মায়ের সবচেয়ে বেশি সুবিধা হয় সেটা নিয়ে তার সাথে আলাপ করুন আপনি হয়তো ব্যাগ গোছানো ডাক্তারি কাগজপত্র গুছিয়ে নেওয়া ও হাসপাতালে যাওয়ার জন্য গাড়ি ঠিক করার মতো কাজগুলোতে সাহায্য করতে পারেন হাসপাতালে পৌঁছানোর পরে তাকে কীভাবে সহায়তা করতে পারেন সেটাও এখন থেকে চিন্তা শুরু করতে পারেন হয়তো সেই সময়ে আপনার পাশে থাকাটাই তাকে অনেকটা সাহস জোগাবেতার জন্য হাতের কাছে পানি রাখতে পারেন মুখ মুছিয়ে দেয়ার জন্য টিস্যু রাখতে পারেন সেই সময়ে কী কী করলে শিশুর মায়ের আরাম হতে পারে তা তার কাছ থেকে বুঝে নেওয়ার চেষ্টা করুনপ্রসবপরবর্তী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানুনঅনেকে ভাবেন যে সন্তান জন্মানোর পর বোধ হয় বেশ কিছুদিন কোনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের প্রয়োজন নেই এই ধারণাটি সম্পূর্ণ ভুলসম্ভাবনা কম হলেও সন্তান জন্মানোর মাত্র তিন সপ্তাহের মধ্যেই শিশুর মা আবার গর্ভবতী হতে পারেন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালেও তিনি আবারও গর্ভবতী হতে পারেনতাই সন্তান জন্মের পর সহবাসের ক্ষেত্রে অবশ্যই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহারের কথা মাথায় রাখবেনকোন পদ্ধতি ব্যবহার করবেন সেটা নিয়ে এখন থেকেই ভাবা শুরু করতে পারেন অবিশুদ্ধ পানি দিয়ে তৈরি খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুন অবিশুদ্ধ পানি পান করলে কিংবা অবিশুদ্ধ পানি দিয়ে তৈরি খাবার খেলে পানিবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যা গর্ভাবস্থায় মারাত্মক হতে পারে[১] তাই রাস্তার ধারের ফুচকা টক শরবত বরফ কুচি ও অনিরাপদ পানি দিয়ে তৈরি অন্যান্য খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুন নিয়মিত পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম করা চালিয়ে যান যোনিপথের আশেপাশের মাংসপেশিগুলো শক্ত করার জন্য আপনি নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ বা কেগেল ব্যায়াম করা চালিয়ে যান কেননা এই পেশিগুলো দুর্বল হয়ে গেলে হাঁচিকাশির সময় কয়েক ফোঁটা প্রস্রাব বেরিয়ে আসার সমস্যাসহ নানান জটিলতা দেখা দিতে পারেটিটি টিকা নিন নিজেকে ও নবজাতককে মারাত্মক টিটেনাস বা ধনুষ্টঙ্কার থেকে রক্ষা করতে সময়মতো টিডি টিকা নিয়ে ফেলুন সরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আপনি বিনামূল্যে এই টিকা নিতে পারবেন আপনি যেখানে গর্ভকালীন চেকআপ করান সাধারণত সেখানেই টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে তাই চেকআপের দিন ডাক্তার দেখিয়ে একেবারে টিকা দিয়ে আসতে পারেন আয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এই সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে এ সপ্তাহে আপনার গর্ভের শিশু মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৩৬৬ সেন্টিমিটার লম্বা হয়ে গিয়েছে—প্রায় একটি ধুন্দলের সমান তার ওজন এখন প্রায় ৮৭৫ গ্রাম শিশুর ত্বক মসৃণ হচ্ছে এই পর্যায়ে আপনার শিশু বেশ হৃষ্টপুষ্ট হতে থাকে কয়েক সপ্তাহ আগেও আপনার শিশুর ত্বক কুঁচকানো অবস্থায় ছিল এখন ত্বকের সেই কুঁচকানো ভাঁজগুলো চর্বি বা ফ্যাট দিয়ে পূরণ হতে শুরু করেছে এভাবে তার ত্বক ধীরে ধীরে মসৃণ হতে শুরু করে পেটে হাত বুলালে শিশু বুঝতে পারে আপনি যদি পেটের ওপর হাত বুলিয়ে শিশুকে আদর করেন সেটা এখন সে বুঝতে পারবে উত্তরে সে নড়াচড়া বাড়িয়ে দিতে পারে শিশুর নড়াচড়ার ধরনের দিকে খেয়াল রাখবেন নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে কিংবা একেবারেই বন্ধ হয়ে গেলে দেরি না করে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করবেনছোট্ট শিশু দ্রুত বেড়ে উঠছেগত সপ্তাহগুলোর মতো এই সপ্তাহেও শিশুর ওজন অনেকখানি বেড়ে গেছে তার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গগুলো পরিণত হচ্ছে ত্বক আরও পুরু হচ্ছে শরীরে চর্বি জমছে সবমিলিয়ে সে দ্রুত বেড়ে উঠছে পানিবাহিত রোগ এসময়ে বিভিন্ন ধরনের পানিবাহিত রোগ এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন যেমন হেপাটাইটিস ই টাইফয়েড ও কলেরা গর্ভাবস্থায় এসব রোগ মারাত্মক ঝুঁকির কারণ হতে পারেতাই আপনি যেসব খাবার খাচ্ছেন এবং যেসব পানীয় পান করছেন সেগুলোতে ব্যবহৃত পানি পরিষ্কার ও দূষণমুক্ত কি না সে বিষয়ে নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করুনপানির উৎস নিরাপদ কি না সে সম্পর্কে নিশ্চিত না হয়ে যেকোনো ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন যেমন রাস্তার ধারের ফুচকার টক ও লেবুর শরবত টিটি টিকা নেওয়া এখনো প্রথম টিটি টিকা না নিয়ে থাকলে এ সপ্তাহে টিটি টিকা নিয়ে ফেলুন এই টিকা আপনাকে ও গর্ভের শিশুকে টিটেনাস বা ধনুষ্টংকারের মতো মারাত্মক রোগ থেকে সুরক্ষা দিবেসেই সাথে ডিপথেরিয়া রোগ থেকেও রক্ষা করবেগর্ভাবস্থায় এই টিকা নেওয়া সম্পূর্ণ নিরাপদগর্ভাবস্থায় সাধারণত ৪ থেকে ৮ মাসের মধ্যে ২ ডোজ টিটি টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় তবে আপনার ১৫ বছর বয়সের পর যদি টিটেনাস টিকার ৫টি ডোজ নেওয়া থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় সাধারণত আবার টিটেনাস টিকা নেওয়ার প্রয়োজন হয় নাসরকারি বিভিন্ন স্বাস্থ্যকেন্দ্র থেকে আপনি বিনামূল্যে এই টিকা নিতে পারবেন আপনি যেখানে গর্ভকালীন চেকআপ করান সাধারণত সেখানেই টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে তাই চেকআপের দিন ডাক্তার দেখিয়ে একেবারে টিকা দিয়ে আসতে পারেনপ্রসবপরবর্তী মানসিক স্বাস্থ্য সন্তান প্রসবের পর প্রথম কয়েকদিন আপনার নিজেকে মানসিকভাবে কিছুটা নিস্তেজ লাগতে পারে সে সময়ে অল্পতে কান্না আসা বা মন খারাপ লাগার মতো অনুভূতি হতে পারে প্রসবপরবর্তী এসব লক্ষণকে বেবি ব্লুজ বা পোস্ট পার্টাম ব্লুজ বলা হয়এমন হলে ঘাবড়ে যাবেন না কারণ এসব লক্ষণ কয়েক দিনের মধ্যে ভালো হয়ে যায় তবে যদি এসব লক্ষণ ২ সপ্তাহ ধরে স্থায়ী হয় সেটি প্রসব পরবর্তী ডিপ্রেশন এর কারণে হতে পারে সেক্ষেত্রে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাতে হবে বুক জ্বালাপোড়া করাএসময়ে পাকস্থলীর এসিড ওপরে উঠে এসে আপনার বুক জ্বালাপোড়া করতে পারেএই সমস্যা কমানোর জন্য আপনি সহজ কিছু উপায় মেনে চলতে পারেন যেমন খাওয়ার সময়ে একবারে বেশি করে না খেয়ে পরিমাণমতো খাওয়া প্রয়োজনে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়ারাতে এই সমস্যা হলে বিছানার যেদিকে আপনি মাথা দিয়ে শুয়ে থাকেন সেই দিকটি কিছুটা উঁচু করতে পারেন এজন্য খাটের পায়ার নিচে ইট বা কাঠের টুকরা দিতে পারেনআরও জানতে আমাদের গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়া লেখাটি পড়তে পারেন অন্যান্য লক্ষণএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো—ক্লান্তিঘুমের সমস্যাস্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগদাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়াপেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করাপাইলসমাথা ব্যথাকোমর ব্যথানাক দিয়ে রক্ত পড়াপেট ফাঁপা লাগাকোষ্ঠকাঠিন্যবদহজমপা কামড়ানোঅল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করামাথা ঘুরানোহাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়াপ্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়াযোনিপথে ইনফেকশন হওয়ামুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়াতৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়াচুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন—ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারেবমি বমি ভাবঅদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা যেমন মাটিতীব্র ঘ্রাণশক্তিস্তনে ব্যথা এবং বোঁটা থেকে দুধের মতো তরল বের হওয়াসাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াযোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এটা গর্ভফুলের গুরুতর সমস্যার কারণে হতে পারে তাই এমন হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন সময়মতো শিশুর মায়ের টিটি টিকা নেওয়া নিশ্চিত করুন গর্ভাবস্থায় সাধারণত ৪ থেকে ৮ মাসের মধ্যে ২ ডোজ টিডি টিকা নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এই টিকা ভবিষ্যতে শিশুর মা ও শিশুকে মারাত্মক টিটেনাস রোগ থেকে সুরক্ষিত রাখবেযেখানে শিশুর মা গর্ভকালীন চেকআপ করান সাধারণত সেখানেই টিকা নেওয়ার ব্যবস্থা থাকবে বিভিন্ন সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্রেও বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়া হয় সময়মতো টিকা নিতে শিশুর মাকে উদ্বুদ্ধ করুন কোথায় এই টিকা দেয়া হয় সেটা খোঁজ নিয়ে সাহায্য করতে পারেন আগে থেকে টিটেনাসের এক বা একাধিক টিকা দেওয়া থাকলে শিশুর মাকে টিকা কার্ড সাথে নেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিন স্বাস্থ্যকর্মীকে টিকা কার্ড দেখালে তিনি পরবর্তী করণীয় সম্পর্কে যথাযথ পরামর্শ দিতে পারবেন বিছানার একদিক একটু উঁচু করে দিন শিশুর মা রাতের বেলায় বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যায় ভুগলে তার বিছানার মাথার দিকটি একটু উঁচু করে দিতে পারেনএজন্য খাটের পায়ার নিচে ইট অথবা কাঠের ব্লক দিয়ে মাথার দিকটা কিছুটা উঁচু করে দিতে পারেন এতে করে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা কমে আসতে পারে[ রাতের খাবার আগেভাগেই সেরে ফেলুন শিশুর মা হয়তো রাতের খাবারটা আপনার সঙ্গে একসাথে বসে উপভোগ করতে চান রাতে একটু আগেভাগে খেলে তা শিশুর মায়ের বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা কমাতে সাহায্য করতে পারে তাই রাতের খাবারের সময়টা এগিয়ে আনার চেষ্টা করবেন বিছানায় যাওয়ার অন্তত ৩ ঘন্টা আগে খাওয়াদাওয়া শেষ করে ফেলতে পারেন খুব তাড়াহুড়া না করে হাতে একটু সময় রাখুন ধীরে ধীরে খাবার খান এতে খাবারটা একসাথে উপভোগ করা হবে আবার হজমের সমস্যা কমানোও সহজ হবে সন্তান প্রসবের পরে নিজের মানসিক স্বাস্থ্যেরও যত্ন নিনসন্তান ভূমিষ্ঠ হওয়ার পরে সাধারণত নতুন মা ও শিশুকে নিয়েই সবাই ব্যস্ত থাকে নতুন বাবা হিসেবে তখন আপনার অনেক দায়িত্ব থাকবে যা হয়তো আপনি খুব আনন্দের সাথে পালন করবেন পাশাপাশি নিজের দিকেও খেয়াল রাখবেন এবং নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের যত্ন নিবেন কারণ এসময়ে বাবারাও বিভিন্ন কারণে মানসিক চাপ অনুভব করতে পারেন শিশু জন্মের পর প্রথম কয়েক মাসে নতুন মায়েদের মতো নতুন বাবারাও কখনো কখনো ডিপ্রেশনে ভুগতে পারেন তাই দুজনেরই মনের যত্ন নেওয়া প্রয়োজন পাশাপাশি ডিপ্রেশন রোগের লক্ষণগুলো চিনে রাখা প্রয়োজন যাতে রোগ দেখা দিলে সময়মতো চিকিৎসা নেওয়া যায়কারো যদি প্রায় সবসময় মন খারাপ লাগতে থাকে কোনো কিছুতে আগ্রহ না আসে আগে যে কাজগুলো ভালো লাগতো তাতে কোনো আনন্দ না পায়—এগুলো ডিপ্রেশন রোগের কারণে হতে পারে কোনো পর্যায়ে যদি আপনার বা আপনার সঙ্গীর এমন লাগে এবং তা দুই সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে তাহলে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করবেন পুষ্টিকর খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিনএখন থেকে আপনাকে খাবারের পরিমাণটা বাড়িয়ে দিতে হবে দিনে অতিরিক্ত প্রায় ৪৫০ ক্যালরি পরিমাণ খাবার খাবেন তবে গর্ভাবস্থার আগে ওজন অতিরিক্ত হলে এর চেয়ে কম পরিমাণে অতিরিক্ত খাবার খাবেন যাতে ওজন অতিরিক্ত না বেড়ে যায় ভালো ঘুমের জন্য আরামদায়ক বালিশ ব্যবহার করুনঘুমের সময় গর্ভাবস্থার জন্য বিশেষভাবে তৈরি প্রেগন্যান্সি পিলো ব্যবহার করতে পারেন এসব বালিশ বাড়ন্ত পেটকে ভালোভাবে সাপোর্ট দিয়ে ঘুম ভালো হতে সাহায্য করতে পারে আয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৩৭৬ সেন্টিমিটার লম্বা—প্রায় একটি চিচিঙ্গার সমান তার ওজন এখন প্রায় ১ কেজি ছোট্ট শিশু চোখ মেলছেএতদিন ছোট্ট শিশুর চোখ দুটো বন্ধ ছিল—চোখের পাতা চোখ দুটোকে ঢেকে রেখেছিলএই সপ্তাহে প্রথমবারের মত শিশু তার চোখ মেলবেপ্রথমে আধোআধো চোখ মেলবে কয়েক সপ্তাহ পর পুরোপুরি চোখ খুলে তাকাবে আর ইতোমধ্যেই সে এদিকওদিক চোখ নাড়াতে শিখে ফেলেছে শিশুর চোখে পাপড়ি আছে শিশুর ছোটো ছোটো চোখের পাতায় এখন পাপড়ি আছে দুই চোখের ওপরে ভ্রু আছে তার মাথায় চুল আছেসবমিলিয়ে ওর চেহারা দিন দিন বিকশিত হচ্ছেস্টেথোস্কোপের সাহায্যে হার্টবিট শোনা সম্ভবস্টেথোস্কোপের সাহায্যে এখন শিশুর হার্টবিট শোনা যায় এবারের চেকআপে গেলে ডাক্তারকে বললে হয়তো তিনি আপনাকেও স্টেথোস্কোপের মাধ্যমে শিশুর হার্টবিট শোনাতে পারবেন ভালো ঘুমের রহস্য আরামদায়ক বালিশগর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত ঘুম হওয়া আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণঘুমাতে যাওয়ার সময়ে আরামদায়ক পরিবেশ তৈরি করে নিলে তা ভালো ঘুম হতে সাহায্য করতে পারেএসময়ে আপনার বাড়ন্ত পেট ও শরীরকে ভালো সাপোর্ট দিতে বিশেষভাবে তৈরি প্রেগন্যান্সি পিলো ব্যবহার করে দেখতে পারেন এগুলো অনলাইনে ও বড় বড় দোকানে কিনতে পাওয়া যায় অনেকে এসব বালিশ ব্যবহার করে এত আরাম পান যে প্রসবের পরবর্তী সময়েও এগুলো ব্যবহার করা চালিয়ে যানছবি প্রেগন্যান্সি পিলো বাড়তি খাবার খাওয়াগর্ভাবস্থার শেষ ৩ মাসে অর্থাৎ ৭ মাস থেকে ৯ মাসে একজন গর্ভবতী মাকে সাধারণ সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত প্রায় ৪৫০ ক্যালরি পরিমাণ খাবার খেতে হয়তবে গর্ভাবস্থার আগে ওজন অতিরিক্ত হলে এর চেয়ে কম পরিমাণে অতিরিক্ত খাবার খাবেন এই বিষয়ে আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে বিস্তারিত পরামর্শ নিনতাই এখন থেকে আপনার খাবারের পরিমাণটা বাড়িয়ে দিন আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য ভালো রাখতে কোন ধরনের বাড়তি খাবার বেছে নেওয়া উচিত সেটা জানতে আমাদের গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা দেখে নিতে পারেন ভুলে যাওয়ার প্রবণতা সমাধানের টিপসঃ এসময়ে আপনি আগের চেয়ে কিছুটা বেশি ভুলোমনা হয়ে যেতে পারেন গর্ভাবস্থায় এমন হওয়া কমন তাই দুশ্চিন্তা করবেন না টেনশন কমাতে প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো কাগজে লিখে রাখতে পারেন একটা চেকলিস্ট বানিয়ে রাখলে ভুলে কাজ বাদ পড়ার সম্ভাবনা এড়াতে পারবেন যেমন বাজার করার আগে একটা লিস্ট বানিয়ে নিয়ে গেলে জরুরি কিছু কিনতে ভুলে যাওয়ার টেনশন থাকবে না ওষুধপত্র সময়মতো খাওয়ার জন্য ফোনে অ্যালার্ম বা রিমাইন্ডার সেট করতে পারেন ডায়েরিতে প্রতিদিনের জন্য একটি চেকলিস্টও তৈরি করতে পারেন লিস্টটা আপনার সঙ্গীর সাথে শেয়ার করলে তিনিও বিভিন্ন সময়ে আপনাকে ঔষধ খাওয়ার কথা মনে করাতে পারবেনএই সম্বন্ধে আরও জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেন অ্যান্টি ডি ইনজেকশন নেওয়াঃ যদি মায়ের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হয় (যেমন A ve) এবং গর্ভের শিশুর রক্তের গ্রুপ পজিটিভ হয় (যেমন A +ve) তাহলে গর্ভের শিশুর মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতার আশংকা থাকে ডাক্তারি ভাষায় এই ঘটনাকে আরএইচ (Rh) ইনকম্প্যাটিবিলিটি বলা হয় সাধারণত প্রথম গর্ভধারণে সমস্যা হয় না তবে পরবর্তী গর্ভধারণে জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে আগে থেকে রক্তের গ্রুপ জেনে ব্যবস্থা নিলে এই সংক্রান্ত জটিলতা প্রতিরোধ করতে পারবেন সাধারণত প্রথম গর্ভকালীন চেকআপের সময়েই আপনার রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করা হবে যদি আপনার রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হয় তাহলে শিশু গর্ভে থাকাকালেই আপনাকে অ্যান্টি ডি ইনজেকশন বা আরএইচ ইমিউনোগ্লোবিউলিন নেওয়ার পরামর্শ দেয়া হতে পারেএটি সাধারণত গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহে দেওয়া হয় অনেকসময় ৩৪তম সপ্তাহে আরেকবার ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে আপনার রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হলে পরবর্তী চেকআপের সময়ে ডাক্তারের কাছ থেকে করণীয় সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে নিন অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— পেট ফাঁপা লাগা নাক দিয়ে রক্ত পড়া ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়াঅদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া যেমন মাটিতীব্র ঘ্রাণশক্তিস্তনে ব্যথাস্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়াসাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াযোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এটা গর্ভফুলের গুরুতর সমস্যার কারণে হতে পারে তাই এমন হলে অবশ্যই ডাক্তার দেখাবেন রাতে এক গ্লাস দুধ গরম করে দিতে পারেন শিশুর মায়ের রাতে ভালো ঘুম হওয়ার জন্য তাকে ঘুমের কাছাকাছি সময়ে এক গ্লাস দুধ গরম করে দিতে পারেন কারণ দুধে ট্রিপ্টোফ্যান থাকে যা ভালো ঘুম হতে সাহায্য করতে পারেশিশুর মায়ের ওজন ঠিকঠাক বাড়ছে কি না খেয়াল রাখুন গর্ভধারণের আগে ওজন স্বাভাবিক হলে পুরো গর্ভাবস্থায় শিশুর মায়ের ওজন ১১৫ কেজি থেকে ১৬ কেজি পর্যন্ত বাড়াটা স্বাভাবিকতবে গর্ভবতী হওয়ার আগে অতিরিক্ত ওজন হলে হিসাবটা একটু ভিন্ন সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থা জুড়ে ৭ কেজি থেকে ১১৫ কেজি পর্যন্ত ওজন বাড়াটা স্বাভাবিক গর্ভকালীন সময়ে মায়ের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম বা বেশি বাড়লে মা ও শিশু দুজনেরই ক্ষতি হতে পারেতাই শিশুর মায়ের ওজন কেমন বাড়ছে তার হিসাব রাখতে সাহায্য করতে পারেন বাসায় ওজন মাপার মেশিন না থাকলে একটা মেশিন কিনে নিতে পারেন সময়মতো অ্যান্টিডি টিকা নিতে সহায়তা করুনগত সপ্তাহে আমরা টিডি টিকা নিয়ে বলেছিলাম এর পাশাপাশি শিশুর মায়ের অ্যান্টি ডি নামের আরেকটা ইনজেকশন নিতে হতে পারেশিশুর মায়ের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ কিন্তু গর্ভের শিশুর রক্তের গ্রুপ পজিটিভ—এমন শিশুদের বিভিন্ন গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা হতে পারে তবে সময়মতো অ্যান্টি ডি ইনজেকশন নিয়ে এই ঝুঁকি কমানো যেতে পারেতাই শিশুর মায়ের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হলে ডাক্তারের সাথে এ ব্যাপারে আলাপ করার কথা মনে করিয়ে দিন ডাক্তার এই ইনজেকশন নেওয়ার পরামর্শ দিলে সময়মতো এই ইনজেকশন নেওয়ার ব্যবস্থা করতে সহায়তা করুন ভুলে যাওয়ার প্রবণতা থাকলে সঠিক সাপোর্ট দিন শিশুর মা এখন কিছুটা ভুলোমনা হয়ে যেতে পারেন গর্ভাবস্থায় এমন হওয়া বেশ কমন দুশ্চিন্তার কোনো বিষয় না প্রতিদিনের গুরুত্বপূর্ণ কাজগুলোর লিস্ট বানিয়ে আপনি তাকে সাহায্য করতে পারেন এতে জরুরি কিছু ভুলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমবে শিশুর মায়ের সাথে কথা বলে তার কাছ থেকে বিভিন্ন ঔষধ খাওয়ার সময় জেনে নিতে পারেন সেই শিডিউল অনুযায়ী তাকে প্রতি বেলায় প্রয়োজনীয় ঔষধ খাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিনকিছু ভুলে গেলে সেটা নিয়ে তাকে কোথা শোনানো থেকে বিরত রাখুন পরিবারের অন্য সদস্যদেরও এই ব্যাপারে সহনশীল হতে অনুরোধ করুন এখন থেকে এক পাশে কাত হয়ে ঘুমাবেন এখন থেকে ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারেঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেন ২ সপ্তাহ পর পর চেকআপে যান এখন থেকে ৩৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবে গত সপ্তাহে চেকআপে গিয়ে না থাকলে এ সপ্তাহে চেকআপের অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে চেকআপ করিয়ে আসুন আয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান বিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৩৮৬ সেন্টিমিটার লম্বা—প্রায় তিনটি সবরি কলার সমান তার ওজন এখন প্রায় ১২ কেজি শিশুর নড়াচড়া দিন দিন বাড়ছে আপনার গর্ভে শিশুর চঞ্চলতা বেড়েই চলেছে সে এখন বেশ চটপটে আপনি নিজেও হয়তো টের পেয়েছেন যে সে এখন আগের চেয়ে বেশি নড়াচড়া করে শিশু ঠিক কী পরিমাণে নড়াচড়া করবে তার কোনো নির্দিষ্ট হিসাব নেই প্রত্যেক গর্ভাবস্থার স্বতন্ত্র ও আলাদা ধরন থাকে তবে আপনার শিশুর নড়াচড়ার ধরন চিনতে শিখুন নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন নড়াচড়া কমেছে কি না সেটা বুঝতে কষ্ট হলে বাম কাত হয়ে ২ ঘন্টা শুয়ে থাকুন এসময়ে ১০ বারের কম নড়াচড়া টের পেলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন শিশুর নড়াচড়া কমে যাওয়া মানেই যে খারাপ কিছু ঘটে গেছে এমন না তবে ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিন্ত হওয়া প্রয়োজন শিশুর ত্বক সুগঠিত হচ্ছে সময়ের সাথে সাথে গর্ভের শিশু আরও বড়সড় হচ্ছে ধীরে ধীরে তার ওজনও বাড়ছে অন্যান্য অঙ্গের পাশাপাশি তার ত্বকের বিভিন্ন স্তর সুগঠিত হচ্ছে[৯] তার ত্বকের নীচের ফ্যাট বা চর্বির স্তর আরও পুরু হচ্ছে ছোট্ট শিশু ধীরে ধীরে পরিণত হচ্ছে আপনার গর্ভের ভেতরে শিশুর শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এরই মধ্যে নিখুঁতভাবে তৈরি হয়ে গিয়েছে সামনের সপ্তাহগুলোতে তার অঙ্গগুলো ঠিকঠাকমতো কাজ করার জন্য আরও পরিণত হবে কিছু দিন পরই তার শরীরের সব অঙ্গ পুরোদমে কাজ করতে শুরু করবে কেননা আর মাত্র ১১ সপ্তাহের মধ্যেই আপনার কোল জুড়ে চলে আসবে আদরের ছোট্ট সোনামণিএ ছাড়া এসময়ে তার শরীরে ফ্যাট বা মেদ জমতে থাকে এক পাশে কাত হয়ে ঘুমানো এই সপ্তাহ থেকে একপাশে কাত হয়ে শুয়ে ঘুমাবেন কারণ কিছু গবেষণায় দেখা গেছে যে গর্ভাবস্থার ২৮ সপ্তাহ পরে গর্ভবতী মা চিৎ হয়ে ঘুমালে মৃতপ্রসব হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারেএটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না তবে এখন থেকে দিনে বা রাতে ঘুমানোর সময়ে এক কাত হয়ে শোয়ার কথা খেয়াল রাখবেন ঘুমের মধ্যে নড়াচড়া করার কারণে জেগে ওঠার সময়ে নিজেকে চিৎ হয়ে থাকা অবস্থায় দেখলে দুশ্চিন্তা করবেন না ঘুম ভেঙে চিৎ হয়ে শুয়ে আছেন খেয়াল করলে পুনরায় এক দিকে কাত হয়ে শুয়ে পড়ুনপ্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট হাঁটাএসময়ে শরীর সুস্থ রাখতে হাঁটাহাঁটি চালিয়ে যানহাঁটার সময়ে উঁচু হিল জুতার পরিবর্তে আরামদায়ক ফ্ল্যাট জুতা বেছে নিন কেডস বা স্নিকারস বেছে নিতে পারেন হাঁটার সময়ে প্রথম কয়েক মিনিট স্বাভাবিকভাবে হেঁটে তারপর থেকে দ্রুত হাঁটার চেষ্টা করুন এভাবে প্রতিদিন মাত্র ৩০ মিনিট করে হাঁটলেও অনেক উপকার হবে দ্রুত হাঁটা শেষ হলে ৫–১০ মিনিট স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে শেষ করুন আস্তে আস্তে হাঁটার পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন ৩০ মিনিট হাঁটার পাশাপাশি আপনার পছন্দের অন্য কোনো ব্যায়ামও বেছে নিতে পারেন গর্ভকালীন চেকআপঃ আপনাকে এখন থেকে ৩৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত প্রতি ২ সপ্তাহে একবার চেকআপে যেতে হবে গত সপ্তাহে গিয়ে না থাকলে এই সপ্তাহে অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে চেকআপ করিয়ে আসুন গত চেকআপে কোনো পরীক্ষা করিয়ে থাকলে সেগুলোর রিপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে নিয়ে যাবেন চেকআপ শেষে পরবর্তী চেকআপের শিডিউল জেনে আসবেন অনিচ্ছাকৃতভাবে খানিকটা প্রস্রাব বেরিয়ে আসাঃ গর্ভাবস্থার এসময়ে হাঁচিকাশি জোরে হাসা কিংবা পেটে চাপ পড়ার মতো সাধারণ কাজেও হুট করে কিছুটা প্রস্রাব বেরিয়ে আসতে পারে এই ঘটনা ঘটে পেলভিক ফ্লোর এর দুর্বলতার কারণে আমাদের দুই পায়ের মাঝের যে পেশিগুলো যৌনাঙ্গ পায়খানার রাস্তা ও মূত্রথলির মতো অঙ্গগুলোকে সাপোর্ট দেয় সেগুলো মিলে এই পেলভিক ফ্লোর তৈরি হয় নিয়মিত পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম করার মাধ্যমে আপনি পেলভিক ফ্লোরের পেশিকে শক্তিশালী করে তুলতে পারেন যা অনিচ্ছাকৃতভাবে প্রস্রাব বেরিয়ে আসার এই বিরক্তিকর সমস্যা সমাধানে কার্যকরপেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম করার নিয়ম জানতে আমাদের পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ লেখাটি পড়তে পারেন অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— বেখেয়ালি বোধ করা বা চলাফেরার সময়ে তাল মেলাতে সমস্যা হওয়া পেট ফাঁপা লাগা নাক দিয়ে রক্ত পড়া ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া যেমন মাটি তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা গর্ভফুলের মারাত্মক সমস্যার লক্ষণ হতে পারে শিশুর মাকে কাত হয়ে শোয়ার কথা মনে করিয়ে দিনএখন থেকে শিশুর মাকে ডান অথবা বাম পাশে কাত হয়ে ঘুমাতে হবে কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারে[১৭][১৮] তাই চিৎ হয়ে ঘুমানো থেকে বিরত থাকার কথা শিশুর মাকে মনে করিয়ে দিন তার জন্য ঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ (যেমন প্রেগন্যান্সি পিলো) অথবা কোলবালিশের ব্যবস্থা করতে পারেনদুজনে মিলে নিয়মিত একত্রে ব্যায়াম করুনগর্ভকালীন সময়ে নিয়মিত ব্যায়াম শিশুর মাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে[১৯] এসময়ে আপনারা একসাথে ব্যায়াম করতে পারেন একসাথে হাঁটতে বেরিয়ে পড়তে পারেনআপনি ব্যায়ামে যোগ দিলে এসময়টা শিশুর মায়ের জন্য আরও উপভোগ্য করে তুলতে পারবেন এবং পারস্পরিক বোঝাপড়া হয়তো ভালো হবে আর একসাথে ব্যায়াম করার অভ্যাস করলে হয়তো আপনি কিংবা আপনার সঙ্গী আলসেমি করে ব্যায়ামের রুটিনে আর ফাঁকি দিতে পারবেন নাআপনি আদর্শ হয়ে দাঁড়ানগর্ভাবস্থায় সব ধরনের স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চলার কাজটা খুব সহজ নয় শরীর আর মনের হাজারো পরিবর্তনের ভিড়ে শিশুর মা হয়তো সবসময় সবচেয়ে স্বাস্থ্যকর সিদ্ধান্তটা নিতে পারছেন না এক্ষেত্রে আপনি তাকে সাহায্য করতে পারেন আপনি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মেনে চললে তিনিও আপনাকে দেখে উদ্বুদ্ধ হতে পারেনখাওয়ার সময়ে বেশি বেশি ফল শাকসবজি মাছ গোটা শস্যদানা (যেমন লাল চালের ভাত ও লাল আটার রুটি) ও পানি খান ভাজাপোড়া মিষ্টি ও ফাস্টফুডের মতো অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়িয়ে চলুন নিয়মিত ব্যায়াম করুন আপনাকে এগুলো করতে দেখলে হয়তো শিশুর মা স্বাস্থ্যকর অভ্যাসগুলো ধরে রাখার উৎসাহ পাবেননবজাতকের যত্ন নিয়ে এখন থেকেই শিখুননবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়াটা নিঃসন্দেহে চ্যালেঞ্জিং সময়ের সাথে এই ব্যাপারটা সহজ হতে থাকবে প্রথম প্রথম আপনি ও শিশুর মা দুজনেই হয়তো খুব ক্লান্ত হয়ে পরবেন তবে চিন্তাভাবনা করে কয়েকটা দায়িত্ব ভাগ করে নিলে দুজনের জন্যই কাজটা সহজ হয়ে আসবেসেই সময়ে আপনি কোন কোন দায়িত্ব নিতে পারেন তা এখন থেকেই চিন্তা শুরু করুন যেমন শিশুকে খাওয়ানোর পর ঢেঁকুর তোলানোর দায়িত্বটা আপনি নিয়ে নিতে পারেন তার পরনের ন্যাপি বা ডায়াপার বদলে দিতে পারেন তাকে গোসল করিয়ে দিতে পারেন এসব কাজ কীভাবে করতে হয় তা এখন থেকেই শেখা শুরু করতে পারেন তাহলে নবজাতকের জন্মের পর নিজেকে অপ্রস্তুত মনে হবে না নবজাতককে ঘুম পাড়ানোর নিয়ম জেনে রাখুনঃ জন্মের পর শিশুকে কখনো উপুড় করে ঘুম পাড়াবেন না তাকে সবসময় পিঠের ওপর চিত করে শুইয়ে ঘুম পাড়াবেন হোক দিনে বা রাতেনাহলে শিশুর বড় ধরনের ক্ষতি হতে পারে পরিবারের সবাইকে এই বিষয়ে সতর্ক করবেন ছোট্টমণির নাম ঠিক করেছেন ছোট্টমণিকে কী নামে ডাকবেন তা নিয়ে নিশ্চয়ই চিন্তা করছেন আপনাদের আপনজন ও বন্ধুদের সাথে বিভিন্ন নাম নিয়ে আলোচনা করতে পারেন অর্থসহ বিভিন্ন ভাষায় ছেলে ও মেয়ে শিশুর নাম পেতে আমাদের অ্যাপের বেবি নেইমস অংশটা ঘুরে দেখতে পারেন এক পাশে কাত হয়ে ঘুমান গত সপ্তাহের মত এ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারে ঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেন আয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান বিগত সপ্তাহগুলোর মতো এই সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৩৯৯ সেন্টিমিটার লম্বা সে প্রায় তিনটি ঢেঁড়সের সমান লম্বা হয়ে গিয়েছে তার ওজন এখন প্রায় ১৩ কেজি ছোট্ট শিশু চোখ খুলতে আর বন্ধ করতে পারেকয়েক সপ্তাহ আগে শিশু চোখ মেলতে শিখেছেপ্রথমে সে আধোআধো চোখ মেলতে পারতো এ সপ্তাহে সে পুরোপুরি চোখ খুলে তাকাতে শিখে যাবে নিজে নিজে চোখ খুলতে আর বন্ধ করতে পারবে আর ইতোমধ্যেই সে এদিকওদিক চোখ নাড়াতে শিখে ফেলেছে দৃষ্টিশক্তি বিকশিত হচ্ছে প্রতিনিয়ত গর্ভের শিশুর চোখে দেখার ক্ষমতা বিকশিত হচ্ছে এ সপ্তাহে সে আলো–অন্ধকারের পার্থক্যও একটু আধটু বুঝতে শিখে যাবেজন্মানোর পর সে রং চিনতে শিখবে শিশুর মাথায় চুল বাড়ছে কয়েক মাস আগেই শিশুর মাথায় চুল গজানো শুরু হয়েছেএ সপ্তাহে তার মাথায় ভালো পরিমাণে চুল থাকতে পারে স্তনের যত্নঃ এসময়ে আপনার স্তনের বোঁটা থেকে শালদুধ অর্থাৎ দুধের মতো হলুদাভসাদা বা সোনালী রঙের আঠালো তরল বের হতে পারে এতে আপনার অস্বস্তি হতে পারে কিংবা গায়ের কাপড় ভিজে যেতে পারে সেক্ষেত্রে টিস্যু পেপার অথবা ব্রেস্ট প্যাড (এই নামেই দোকানে কিনতে পাওয়া যায়) ব্যবহার করুন গর্ভাবস্থায় স্তনের কোন পরিবর্তন স্বাভাবিক আর কোনটা চিন্তার বিষয় তা জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেন চুলকানি কমাতে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহারঃ গর্ভকালীন সময়ে আপনার শরীরে ফাটা দাগ দেখা যেতে পারে এবং সেখানে চুলকানি হতে পারে চুলকানি কমাতে ত্বকে ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন কারণ শুষ্ক ত্বক চুলকানি আরও বাড়িয়ে দিতে পারে তাই আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম অথবা লোশন ব্যবহার করে আরাম পেতে পারেন অনেকে এসব দাগ দূর করার উপায় জানতে চান কোনো লোশন অথবা ক্রিম ব্যবহারে এসব দাগ পুরোপুরি দূর হওয়ার কোনো প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি তবে সাধারণত সন্তান জন্মের পর এসব দাগ ধীরে ধীরে হালকা হয়ে যেতে থাকে দাগের কারণে অস্বস্তি হলে একজন চর্মরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে পারেন সাইড কাটা বা এপিশিওটোমিঃ নরমাল ডেলিভারির সময়ে কারও কারও যোনিপথের মুখের একপাশে সামান্য একটু অংশ কাটার প্রয়োজন হয়একে অনেকে সাইড কাটা নামে চেনেন ডাক্তারি ভাষায় এই পদ্ধতিকে বলা হয় এপিশিওটোমি প্রসবের পর পরই কাটা জায়গা সেলাই করে দেওয়া হয় যা সাধারণত এক মাসের মধ্যে সেরে ওঠে এই বিষয়ে প্রশ্ন থাকলে চেকআপের সময়ে ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করে নিন ছোট্টমণিকে ঘুম পাড়ানোঃ জন্মের পর শিশুকে কীভাবে নিরাপদে ঘুম পাড়াবেন সেটা এখন থেকেই জেনে রাখুন কেউ কেউ হয়তো শিশুকে উপুড় করে অর্থাৎ পেটের ওপরে ঘুম পাড়ানোর পরামর্শ দিতে পারেন তবে এভাবে ঘুমানো শিশুর জন্য নিরাপদ নয় গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে চিৎ করে শোয়ানোর তুলনায় উপুড় করে শোয়ানো শিশুদের মধ্যে মৃত্যুহার কয়েক গুণ বেশি হতে পারে[ঠিক কী কারণে এমনটা হয় তা এখনো পরিষ্কার নয় এই ভয়ানক দুর্ঘটনার সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে শিশুকে সবসময় চিৎ করে বা পিঠের ওপরে শুইয়ে ঘুম পাড়াবেন সেটা হোক দিনের বেলা কিংবা রাতে ঘুমের সময়ে শিশু যেখানে ঘুমায় সেখানে বালিশ কাঁথা কাপড়ের খেলনা যেগুলো শিশুর মাথা ঢেকে ফেলতে পারে সেগুলো সরিয়ে রাখবেন এসব ব্যাপারে বাড়ির অন্য সদস্যদেরকেও এখন থেকেই সতর্ক করে রাখুন অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— শ্বাসকষ্ট স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়া এ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া যেমন মাটি তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে ছোট্টমণির ঘুমানোর জায়গা ঠিক করুনশিশু জন্মের পর কোথায় ঘুমাবে সেটা দুজনে মিলে আলাপ করতে পারেন আপনারা যেই ঘরে ঘুমান শিশুকেও সেই ঘরে আপনাদের বিছানার পাশেই আলাদা একটা কট বা ছোটো বিছানায় ঘুমানোর ব্যবস্থা করে দিতে পারেন এসব বিছানা কোথায় পাওয়া যায় সে বিষয়ে এখনই খোঁজ নেওয়া শুরু করে দিনইন্টারনেটে Cot বা Crib লিখে সার্চ করলে বিভিন্ন মডেল ও ডিজাইন দেখতে পারবেন কোনটা কেনা যায় সেই বিষয়ে দুজনে মিলে সিদ্ধান্ত নিন কেনার আগে ঘরে কটটা রাখার জন্য জায়গা তৈরি করে নিন শিশুকে ঘুম পাড়াতে শিখুনপ্রসবের পর শিশুর মা স্বাভাবিকভাবেই অনেক ক্লান্ত থাকবেন তার ওপর প্রতি রাতেই কয়েকবার করে ঘুম থেকে উঠতে হবে শিশুকে খাওয়ানোর জন্য খাওয়ানোর আগে ও পরের সময়টায় আপনি শিশুর দেখভাল করতে পারেন তাকে ঘুম পাড়ানোর দায়িত্ব নিতে পারেনশিশুকে সবসময় পিঠের ওপর চিত করে শুইয়ে ঘুম পাড়াবেন নাকারণ পেটের ওপর উপুড় করে বা কাত করে শুইয়ে ঘুম পাড়ালে শিশুমৃত্যুর মত দুর্ঘটনার সম্ভাবনা বাড়তে পারেপরিবারের অন্য যারা শিশুর দেখভালের দায়িত্বে থাকবেন তাদেরকে এই ব্যাপারে সতর্ক করবেন সাইড কাটা বা এপিশিওটোমি সম্পর্কে জেনে রাখুননরমাল ডেলিভারির সময়ে শিশুর মায়ের যৌনিপথের মুখের একপাশে সামান্য একটু কাটার প্রয়োজন হতে পারেপ্রসবের সময়ে পথটা একটু প্রশস্ত করতে এই পদ্ধতির সাহায্য নিতে হতে পারে একে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় এপিশিওটোমি অনেকে এটিকে সাইড কাটা নামে চেনেনপ্রসবের পর পরই কাটা জায়গা সেলাই করে দেওয়া হয় এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে চেকআপের সময়ে ডাক্তারের কাছে জিগ্যেস করতে পারেন ডেলিভারির সম্ভাব্য স্থান নিয়ে দুইজন মিলে আলোচনা করুনআপনাদের সন্তানের জন্ম হতে আরও কয়েক মাস বাকি আছে তবুও এখন থেকে অল্প অল্প করে ডেলিভারির প্রস্তুতি নিতে শুরু করুন কোন হাসপাতাল অথবা ক্লিনিকে সন্তান প্রসব হলে আপনাদের দুইজনের জন্য সুবিধা হয় সেটি এখন থেকেই আলোচনা করে ঠিক করে রাখুনএসময়ে সাধারণত সহবাস নিরাপদআপনার যদি গর্ভকালীন কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা না থাকে এবং ডাক্তার যদি সহবাস নিয়ে কোনো বিধিনিষেধ না দিয়ে থাকেন তাহলে এসময়ে আপনি নিরাপদে সহবাস করতে পারবেনএতে গর্ভের শিশুর কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই বাড়ন্ত পেটের কারণে সহবাসে অস্বস্তি হলে সঙ্গীর সাথে বোঝাপড়া করে মানানসই অবস্থান বেছে নিনএক পাশে কাত হয়ে ঘুমান এ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারেঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৪১১ সেন্টিমিটার লম্বা সে প্রায় একটি দেশি বাঙ্গির সমান লম্বা হয়ে গিয়েছে তার ওজন এখন প্রায় ১৫ কেজিশিশুর ওজন বাড়ছেগর্ভের শিশুর শরীরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ এখন অনেকখানি তৈরি হয়ে গেছে সামনের সপ্তাহগুলোতে দ্রুত ওজন বাড়বেশেষ আড়াই মাসে ওজন দ্বিগুণ বা তার বেশি হয়ে যাবেত্বক মসৃণ হচ্ছেছোট্ট শিশুর ত্বক এখনো কিছুটা কুঁচকানোতবে সময়ের সাথে সাথে ত্বকের নীচের ফ্যাট বা চর্বির স্তর জমে ত্বক মসৃণ হতে থাকবেঅ্যামনিওটিক ফ্লুইডের পরিমাণ বাড়ছেছোট্ট শিশুটি গর্ভের ভেতরে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড নামের পানির মতো এক ধরনের তরল পদার্থের মধ্যে আছে দিন দিন সেই অ্যামনিওটিক ফ্লুইডের পরিমাণ বাড়ছে[কারণ আপনার শিশু এখন নিয়মিত প্রস্রাব করে এবং তার এই প্রস্রাব অ্যামনিওটিক ফ্লুইডে গিয়ে জমা হয়তবে এই প্রস্রাবের প্রায় পুরোটাই পানি কারণ মায়ের গর্ভফুল বর্জ্য পদার্থ সরিয়ে নেয় গর্ভাবস্থায় সহবাসঃগর্ভাবস্থায় যদি ডাক্তার আপনাকে সহবাস থেকে বিরত থাকার পরামর্শ না দিয়ে থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় সহবাস করা আপনার জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ এতে গর্ভের সন্তানের কোনো ধরনের আঘাত পাওয়ার কিংবা অকাল প্রসবের সম্ভাবনা নেইবাড়ন্ত পেটের কারণে সহবাস করাটা একটু কঠিন হতে পারে তাই সঙ্গীর সাথে আলোচনা করে আপনাদের জন্য আরামদায়ক ও মানানসই অবস্থান বেছে নিনগর্ভাবস্থায় কীভাবে সহবাস করা নিরাপদ জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেন ব্র্যাক্সটনহিক্স কনট্র্যাকশনঃআপনার পেট কি ২০–৩০ সেকেন্ডের জন্য শক্ত বা টানটান হয়ে যাচ্ছে তারপর আবার স্বাভাবিক হয়ে আসছে কিন্তু কোনো ব্যথা লাগছে না এই ঘটনাকে ডাক্তারি ভাষায় ব্র্যাক্সটনহিক্স কনট্র্যাকশন বলা হয়পেটের ভেতরে জরায়ুর সংকোচনপ্রসারণের কারণে এমনটা হয় এসময়ে ব্র্যাক্সটনহিক্স কনট্র্যাকশন হওয়া সম্পূর্ণ স্বাভাবিক তবে এর সাথে যদি ব্যথা হয় কিংবা যদি নিয়মিত বিরতিতে এমন চলতে থাকে তাহলে সেটা প্রসবের লক্ষণ হতে পারে সেক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন গর্ভকালীন চেকআপঃআপনাকে এখন প্রতি ২ সপ্তাহে একবার করে চেকআপে যেতে হবে গর্ভাবস্থার ৩৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত এই শিডিউলেই চেকআপ চলতে থাকবে তাই সময়মতো চেকআপ করিয়ে আপনার ও গর্ভের শিশুর সুস্থতা সম্পর্কে নিশ্চিত হোনএ ছাড়া আগামী সপ্তাহে আপনাকে হয়তো রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করতে দেওয়া হবে তার জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র গুছিয়ে প্রস্তুত থাকুন ডেলিভারির জন্য ব্যাগ গুছিয়ে রাখাঃডেলিভারির জন্য হাসপাতালে যাওয়ার সময়ে তাড়াহুড়ায় যেন কোনো গুরুত্বপূর্ণ কাগজ অথবা জিনিস বাড়িতে ফেলে না যান সেজন্য আগে থেকে একটা চেকলিস্ট তৈরি করে রাখুনগর্ভকালীন চেকআপের সবগুলো কাগজ সাথে করে নিয়ে যেতে হবে এগুলো আগে থেকেই ফাইলে গুছিয়ে রাখবেন যেমন প্রেসক্রিপশন আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ব্লাড গ্রুপ ও অন্যান্য পরীক্ষানিরীক্ষার রিপোর্টসেই সাথে আপনি নিয়মিত যেসব ওষুধ খান সেগুলোর ৫–৬ দিনের ডোজ হিসেব করে ফাইলপত্রের সাথে গুছিয়ে রাখুন অন্তত বড় গলার একটা হাফ হাতা জামা বা ম্যাক্সি ড্রেস পেটিকোট ও অন্তর্বাসের সেট তৈরি করে হাতের নাগালে রাখুন—যেন প্রসববেদনা উঠলে দ্রুত সেগুলো পরে হাসপাতালে চলে যেতে পারেন এতে সঠিকভাবে প্রেশার মাপা ইনজেকশন দেওয়া প্রস্রাব পরীক্ষা করাসহ অনেকগুলো কাজে সুবিধা হবেপূর্ণ চেকলিস্ট পেতে আমাদের এই লেখাটা পড়ে নিতে পারেন অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— পেট টানটান বা শক্ত হওয়া শ্বাসকষ্ট স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস (যেমন মাটি) খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে গর্ভাবস্থায় কখন সহবাস করা বিপজ্জনক তা জেনে রাখুনআপনারা হয়তো শুনে থাকবেন যে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে এবং শেষের তিন মাসে সহবাস করলে গর্ভের সন্তানের ক্ষতি হতে পারে এই ধারণা সম্পূর্ণ সঠিক নয়গর্ভাবস্থা যদি স্বাভাবিক হয় এবং ডাক্তার আপনাকে সহবাস থেকে বিরত থাকার বিশেষ পরামর্শ না দিয়ে থাকেন তাহলে গর্ভাবস্থায় সহবাস করা আপনাদের জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ এতে গর্ভের সন্তানের কোন ধরনের আঘাত পাওয়ার ক্ষতি হওয়ার কিংবা অকাল প্রসবের সম্ভাবনা নেইতবে কিছু ক্ষেত্রে সহবাস করা বিপজ্জনক হতে পারে যেমন গর্ভাবস্থায় মাসিকের রাস্তা দিয়ে ভারী রক্তপাত হলে আগে কখনো অপরিণত অবস্থায় বা প্রিম্যাচিউর সন্তান প্রসব হয়ে থাকলে কিংবা পানি ভাঙলে এসব ক্ষেত্রে সহবাস এড়িয়ে চলতে হবেআর কোন কোন অবস্থায় সহবাস করা বিপজ্জনক তা জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনশিশুর মায়ের সাথে প্রতিটি চেকআপে যাওয়ার চেষ্টা করুনপ্রতিটি গর্ভকালীন চেকআপ মা ও গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্যরে জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাই চেকআপের সময়ে আপনিও সাথে থাকার চেষ্টা করুন শিশুর মা কখন কীভাবে ও কোথায় চেকআপে যাবেন সেটি জেনে নিয়ে আপনার শিডিউল সেই অনুযায়ী ফাকা রাখুন চেকআপে যাওয়ার জন্য আরামদায়ক যানবাহনের ব্যবস্থা করার দায়িত্বটি আপনি নিয়ে নিতে পারেনচেকআপে ডাক্তারের পরামর্শগুলো মনোযোগ দিয়ে শুনুন এবং সেগুলো মেনে চলতে শিশুর মাকে সহায়তা করুন গর্ভাবস্থা বা ডেলিভারি নিয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে সেগুলো ডাক্তারকে জিজ্ঞেস করে একটা পরিষ্কার ধারণা নিয়ে নিতে পারেনহাসপাতালের ব্যাগ গোছানো শুরু করুনহাসপাতালে যাওয়ার প্রস্তুতি না নিয়ে থাকলে এখন থেকেই ব্যাগ গোছাতে শুরু করুন শিশু ও শিশুর মায়ের পরিচর্যার জন্য কী কী নিতে হবে সেটার একটা লিস্ট বানিয়ে নিন এতে সব প্যাক করা সহজ হবে বাড়িতে কিছু ভুলে ফেলে যাওয়ার সম্ভাবনা কমবেশিশু ও শিশুর মায়ের প্রয়োজনীয় জিনিসের পাশাপাশি আপনার প্রয়োজনীয় টুকটাক কিছু জিনিস (যেমন ব্রাশ ঔষধ এক সেট জামাকাপড় ও ফোন চার্জার) নিতে ভুলবেন না যানবাহনের ব্যবস্থাও আগে থেকে ঠিক করে রাখুন যদি নির্ধারিত সময়ের আগে কোন কারণে হাসপাতালে যেতে হয় তাহলেও এই প্রস্তুতিগুলো কাজে আসবেচাইলে আমাদের এই চেকলিস্টের সাহায্য নিতে পারেন জন্মের পর পরই প্রথম কয়েক মিনিটে কী কী হয় সে সম্পর্কে জানুনছোট্ট শিশু জন্ম নেওয়ার পর পরই গা মুছিয়ে মায়ের বুকের ওপরে শুইয়ে দেওয়া হয় জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হয়এসময়ে আপনার ও শিশুর এই সুন্দর মুহূর্তের কিছু ছবি তুলে রাখার কথা শিশুর বাবাকে বলে রাখতে পারেনগর্ভের শিশুর নড়াচড়া খেয়াল রাখুনগর্ভের শিশুর নড়াচড়া স্বাভাবিকের তুলনায় কমে গেলে দেরি না করে হাসপাতালে যাবেন কারণ তা শিশুর মারাত্মক অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে তবে শিশুর নড়াচড়া কমে যাওয়া মানেই যে খারাপ কিছু ঘটে গেছে তা না কিন্তু ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিন্ত হওয়া প্রয়োজনএক পাশে কাত হয়ে ঘুমানএ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারেঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৪২৪ সেন্টিমিটার লম্বা—প্রায় তিনটি গাজরের সমান তার ওজন এখন প্রায় ১৭ কেজিচোখে আলো পড়লে শিশু বুঝতে পারবেকয়েক সপ্তাহ আগে শিশু আলো–অন্ধকারের পার্থক্য বুঝতে শুরু করেছেএখন সে আরও ভালোভাবে এই পার্থক্য বুঝতে পারে এ সপ্তাহ শেষে চোখে আলো পড়লে ছোট্ট শিশুর চোখের মণি কুঁচকে যাবেগায়ের নরম লোমগুলো পড়ে যাচ্ছেগত কয়েক মাস ধরে আপনার শিশুর পুরো দেহ ল্যানুগো নামক এক ধরনের নরম মসৃণ ও তুলতুলে লোমের আবরণে আবৃত ছিলএ সপ্তাহে লোমগুলো পড়ে যেতে শুরু করেপরবর্তীতে আবার নতুন লোম গজাবে—যা আগের চেয়ে খানিকটা কম নরম হবেছেলে শিশুর শুক্রাশয় নিচে নামছেআপনার গর্ভের শিশু ছেলে হয়ে থাকলে এ সপ্তাহে তার শুক্রাশয় নীচের দিকে অর্থাৎ স্ক্রোটাম বা শুক্রথলির দিকে নামতে শুরু করেগর্ভাবস্থার প্রথম দিকে ছেলে শিশুদের শুক্রাশয় পেটের দিকে থাকেপরবর্তীতে তা নীচে নেমে শুক্রথলির ভেতরে প্রবেশ করে আগামী মাসে প্রতি সপ্তাহে ৪৫০ গ্রাম বা প্রায় আধা কেজি করে আপনার ওজন বাড়বেআপনার পাশাপাশি গর্ভের শিশুর ওজনও বাড়তে থাকবে তার শরীরে ফ্যাট বা চর্বি জমা হবে এই ফ্যাট যে ছোট্টমণিকে শুধু গোলগাল করে তুলবে তা নয় শিশুর শরীরের এই ফ্যাট জন্মের পরে শরীরে সঠিক তাপমাত্রা বজায় রাখতে সাহায্য করবেপ্রসবের সময়কালঃনিয়মিত বিরতিতে প্রসববেদনা ওঠা থেকে শুরু করে প্রসবের জন্য জরায়ুমুখ পুরোপুরি প্রস্তুত হতে সাধারণত ৮–১২ ঘন্টা সময় লাগে তবে দ্বিতীয় বা তৃতীয় প্রেগন্যান্সিতে আরও কম সময় লাগে—সাধারণত ৫ ঘন্টার মতজরায়ুমুখ পুরোপুরি খুলে যাওয়ার পর থেকে গর্ভের শিশু প্রসব হতে সাধারণত ৩ ঘন্টার বেশি সময় লাগে না[তবে আগে সন্তান হয়ে থাকলে সাধারণত ২ ঘন্টার মধ্যেই গর্ভের শিশু প্রসব হয় সন্তান প্রসবের পর প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল বের করে আনা হয়প্রসবের ঠিক পরের সব ঘটনাঃপ্রসবের পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব শিশুকে মায়ের বুকে দেওয়া হবে মায়ের ত্বকের সংস্পর্শে রাখার আগে সদ্যোজাত ছোট্ট শিশুর ভেজা শরীর একটি শুকনো ও পরিষ্কার কাপড় দিয়ে মুছে নেওয়া হবে[১৭] এরপর মায়ের বুকের ওপরের কাপড় সরিয়ে শিশুকে মায়ের ত্বকের সংস্পর্শে রাখা হয় এবং মা ও শিশু দুজনের ওপর একটা কাঁথা বা কম্বল দিয়ে ঢেকে দেয়া হয়মায়ের ত্বকের সাথে শিশুর ত্বক সরাসরি সংস্পর্শে থাকলে তা শিশুর হৃৎস্পন্দন ও শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করেজন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হবে জন্মের পর প্রথম ঘন্টার মধ্যে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে নবজাতকের মৃত্যুর ঝুঁকি কমে আসেরক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষাঃএ সপ্তাহে ডাক্তার আপনাকে রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেন রক্তশূন্যতা আছে কি না তা রক্তে হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করে দেখা হয় সাথে সাধারণত আরও কিছু পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয় ডাক্তারের পরামর্শে সময়মতো এই পরীক্ষাগুলো করিয়ে ফেলবেনপোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনঃসন্তান জন্মানোর পর অনেকে ডিপ্রেশনে ভোগেন ডিপ্রেশন রোগের লক্ষণগুলো চিনে রাখলে সময়মতো চিকিৎসা করানো সম্ভব লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে অল্পতে কান্না পাওয়া মন খারাপ লাগা কোনো কিছুতেই আনন্দ না পাওয়া মনোযোগ দিতে না পারাআপনজনের কাছ থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতে ইচ্ছা হতে পারেএসব লক্ষণ যদি ২ সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিবেন সম্ভব হলে একজন মানসিক স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ দেখানোর চেষ্টা করবেনঅন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— ক্লান্তি ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ দেখা দিতে পারে তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়া এ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া যেমন মাটি তীব্র ঘ্রাণশক্ স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হও সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে সহায়তা করুনএ সপ্তাহে ডাক্তার শিশুর মাকে রক্ত ও প্রস্রাব পরীক্ষা করার পরামর্শ দিতে পারেন পরীক্ষার সময় তার সাথে কে যাবে সেটা ঠিক করে রাখতে পারেন কেউ কেউ বাড়িতে বসে পরীক্ষা করানোর অপশন বেছে নেন কীভাবে শিশুর মায়ের সুবিধা হবে সেটা তার সাথে কথা বলে সেই অনুযায়ী পরীক্ষার ব্যবস্থা করতে পারেনপ্রসবের সময়কাল জেনে রাখুনপ্রসবের সময়কাল বেশ লম্বা কতক্ষণ ধরে প্রসব চলতে পারে তা নিয়ে ধারণা থাকলে আপনি সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিতে পারবেন এবং বিভিন্ন ধাপে শিশুর মাকে কীভাবে সাপোর্ট দিতে পারেন তা নিয়ে চিন্তাভাবনা শুরু করতে পারেনপ্রসববেদনা ওঠা থেকে শুরু করে প্রসবের জন্য জরায়ুমুখ পুরোপুরি প্রস্তুত হতে সাধারণত ৮–১২ ঘন্টা সময় লাগে আগে কখনো ডেলিভারি হয়ে থাকলে তার চেয়ে কিছুটা কম সময় লাগবে—প্রায় ৫ ঘন্টার মতোতারপর শুরু হয় কষ্টের ধাপ আপনার সঙ্গী গর্ভের শিশুকে প্রসব করে ফেলার তাড়না অনুভব করবেন শিশুর মা চাইলে এই ধাপে আপনি পাশে থেকে সাহস দিতে পারেন প্রথম ডেলিভারির ক্ষেত্রে সাধারণত ৩ ঘন্টার মধ্যে আর আগে কখনো ডেলিভারি হয়ে থাকলে হয়তো ২ ঘন্টার মধ্যে এই ধাপের সমাপ্তি হবেতারপর গর্ভের ভেতরে শিশুকে ঘিরে থাকা সব পর্দা ও প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল বের করে আনা হয়এতে ৫–৩০ মিনিটের মতো সময় লাগতে পারে৷এ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেনশিশুর জন্মের পর পর কী কী ঘটবে সেটা ভালমতো জেনে নিনছোট্ট শিশু জন্ম নেওয়ার পর পরই শিশুর গা মুছিয়ে সাধারণত ডাক্তার অথবা নার্স মায়ের বুকের ওপরে শুইয়ে দেয়তারপর যত দ্রুত সম্ভব শিশুর মাকে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে উৎসাহ দেওয়া হয় এর মধ্যেই ডাক্তার শিশুকে ভালোমতো পরীক্ষানিরীক্ষা করে পর্যবেক্ষণ করেনআপনি ডেলিভারি রুমে থাকলে শিশুর প্রথম কান্না হাতপা ছোঁড়াছুঁড়ি ও ডাক্তারের পরীক্ষানিরীক্ষা করা দেখতে পাবেন পরবর্তীতে এসব শিশুর মায়ের সাথে শেয়ার করতে পারবেন এসময়ে আপনি সুন্দর কিছু মুহূর্তের ছবি তুলে রাখতে পারেন যা স্মৃতি হয়ে থেকে যাবে বিপদ চিহ্নগুলো জেনে রাখুনআপনিসহ বাসার সকলের গর্ভাবস্থার বিপদ চিহ্নগুলো জেনে রাখা প্রয়োজন কোনো জরুরি অবস্থা দেখা দিলে সেসব লক্ষণ চিহ্নিত করে যত দ্রুত সম্ভব সঠিক পদক্ষেপ নেওয়া যাবেএক পাশে কাত হয়ে ঘুমানএ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারেঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৪৩৭ সেন্টিমিটার লম্বা—প্রায় দুটি ফজলি আমের সমান তার ওজন এখন প্রায় ১৯ কেজিশরীরের হাড়গুলো মজবুত হচ্ছেগর্ভের শিশুর শরীরের হাড়গুলো শক্ত ও মজবুত হচ্ছেতবে তার মাথার খুলির হাড়গুলো শরীরের অন্যান্য হাড়ের তুলনায় এখনো অনেক নরম ও নমনীয়মাংসপেশি গড়ে উঠছেগর্ভাবস্থার প্রথমদিকেই হাতপায়ের মাংসপেশি তৈরি হতে শুরু করেএখন সেগুলো আরও শক্তপোক্ত হচ্ছে সাথে সাথে শিশুর নড়াচড়াও অনেকখানি বেড়ে যাচ্ছেসে এখন শ্বাস নিতে শিখছেছোট্ট শিশু গর্ভের ভেতরে শ্বাস নেওয়ার অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছে এতে তার ফুসফুসের বৃদ্ধি তরান্বিত হয় সন্ধ্যার দিকে তার শ্বাসের গতি সবচেয়ে বেশি থাকেআপনি কোনো কিছু খেলেও তার শ্বাসের গতি বেড়ে যায়শিশুর মস্তিষ্ক শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারেছোট্ট শিশুর ব্রেইন বা মস্তিষ্ক দ্রুত বিকশিত হচ্ছে এবং সুগঠিত হচ্ছেমস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্র ইতোমধ্যে এমন পর্যায়ে পৌঁছে গেছে যে তা শিশুর শ্বাসপ্রশ্বাস নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে এবং শরীরের তাপমাত্রা বজায় রাখতে পারবে প্রসব শুরুর লক্ষণঃএখন থেকেই প্রসব শুরু হওয়ার লক্ষণগুলো জেনে নিন এসব লক্ষণের মধ্যে রয়েছে কিছুক্ষণ পর পর নিয়মিত পেটে ব্যথা হওয়া শো বা আঠালো রক্তমিশ্রিত স্রাবের দলা যাওয়া মাসিকের রাস্তা দিয়ে পানি ভাঙ্গা পায়খানার চাপ আসা এবং এমন কোমর ব্যথা হওয়া যা আপনার সাধারণত হয় নাএসব লক্ষণ নিয়ে বিস্তারিত জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেন গর্ভাবস্থায় বিপদ চিহ্নঃগর্ভাবস্থায় মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে এসবের মধ্যে রয়েছে মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত খিঁচুনি তীব্র মাথাব্যথা যা কিছুতেই সারছে না শরীর হঠাৎ করে ফুলে ওঠা বা অনেক বেশি ফুলে ওঠা প্রচণ্ড পেট ব্যথা গর্ভের শিশু নড়াচড়া কম করা বা একেবারেই নড়াচড়া না করা এর মধ্যে যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে আপনাকে জরুরি ভিত্তিতে হাসপাতালে যেতে হবেসবগুলো বিপদচিহ্নের তালিকা পেতে আমাদের এই লেখাটা পড়ে নিতে পারেন চাইলে ফোনে সেভ করে রাখতে পারেন গর্ভকালীন চেকআপঃএই সপ্তাহের চেকআপ করানোর জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে ফেলুন চেকআপে যাওয়ার সময়ে প্রয়োজনীয় সব কাগজ প্রেসক্রিপশন ও পরীক্ষানিরীক্ষার রিপোর্ট নিতে ভুলবেন না গর্ভাবস্থার ৩৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত আপনাকে প্রতি ২ সপ্তাহে একবার করে চেকআপে যেতে হবেপ্রসবপরবর্তী চেকআপঃডেলিভারির পর মা ও নবজাতকের সুস্থতা নিশ্চিত করতে অন্তত ৪ বার চেকআপ করাতে হয় প্রসবের ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রথম চেকআপ ২–৩ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় চেকআপ ৪–৭ দিনের মধ্যে তৃতীয় চেকআপ ও ৪২–৪৫ দিনের মধ্যে চতুর্থ চেকআপ করাতে হয়ডেলিভারির পর আপনার ও শিশুর স্বাস্থ্যের অবস্থার ওপরে নির্ভর করে আরও ঘন ঘন চেকআপের প্রয়োজন হতে পারে ডেলিভারির পরও গর্ভকালীন চেকআপের কাগজগুলো সংরক্ষণ করুন এগুলো ভবিষ্যতে প্রসবপরবর্তী চেকআপের সময়ে কাজে লাগতে পারে অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস (যেমন মাটি) খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে এ সপ্তাহগুলোতে আমরা এমন কিছু পরামর্শ তুলে ধরছি যা শুধু গর্ভাবস্থায় নয় বরং প্রসব ও শিশুর জন্মগ্রহণের পরেও আপনাকে শিশুর মা ও শিশুর পাশে থেকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে সাহায্য করবেপ্রসবের লক্ষণ ও বিপদ চিহ্নগুলো জেনে রাখুনআপনার ও পরিবারের সবার জন্যই প্রসবের লক্ষণ ও বিপদ চিহ্নগুলো জেনে রাখা খুব জরুরি কারণ কখনো কখনো শিশুর মা সেই লক্ষণগুলো নাও বুঝতে পারেন বা বোঝার মতো অবস্থায় নাও থাকতে পারেন যেমন অজ্ঞান হয়ে পড়া বা খিঁচুনি হওয়ার মত বিপদচিহ্নসেক্ষেত্রে তার আশেপাশে যারা আছে তাদেরকে এসব লক্ষণ চিহ্নিত করে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে তাই লক্ষণগুলো ভালো করে চিনে রাখুন প্রয়োজনে ফোনে সেভ করে বা ছবি তুলে রাখুন পরিবারের অন্যদের সাথেও এই বিষয়ে কথা বলুনহাসপাতালে যাতায়াতের খুঁটিনাটি আগেভাগে ঠিক করে রাখুনপ্রসববেদনা উঠলে আপনারা বাসা থেকে হাসপাতাল পর্যন্ত কিভাবে যাবেন সাথে কে বা কারা যাবে কোন ধরনের যানবাহনে করে যাবেন বাড়িতে ছোটো শিশু থাকলে তাদের দায়িত্ব কে নেবে—এসব ব্যাপারে এখনই সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুনসিএনজিতে যাবেন গাড়ি ভাড়া করবেন উবার ডাকবেন না কি নিজেদের গাড়ি থাকলে সেটাতে করে যাবেন তা ঠিক করে রাখুন ড্রাইভারদের ফোন নাম্বার নিয়ে রাখুন একের অধিক অপশন হাতে রাখতে পারলে খুব ভালো হয়শিশুর মায়ের সাথে কথা বলে আপনি ছাড়াও হাসপাতাল পর্যন্ত যাওয়ার জন্য অন্তত ২–৩ জনকে বলে রাখুন এতে করে হঠাৎ কোনো প্রয়োজন হলে কিংবা কোনো কাজে আটকা পড়লে অন্যরা সহযোগিতা করতে পারবেশিশুর মা চাইলে তার ব্যক্তিগত কাজে সাহায্য করার জন্য পরিবারের একজন নারী সদস্যকে বলে রাখতে পারেন তা ছাড়া সম্ভাব্য রক্তদাতা কারা হতে পারে সে ব্যাপারেও চিন্তা করুনশিশুর মায়ের প্রসবপরবর্তী চেকআপের কথা মাথায় রাখুনশুধুমাত্র গর্ভাবস্থাতেই নয় সন্তান প্রসবের পরও শিডিউল অনুযায়ী প্রসব পরবর্তী চেকআপ করানো প্রয়োজন নবজাতক ও তার মায়ের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে অন্তত ৪ বার চেকআপ করাতে হয় সাধারণত প্রসবের ২৪ ঘন্টার মধ্যে প্রথম চেকআপ ২–৩ দিনের মধ্যে দ্বিতীয় চেকআপ ৪–৭ দিনের মধ্যে তৃতীয় চেকআপ ও ৪২–৪৫ দিনের মধ্যে চতুর্থ চেকআপ করাতে হয়প্রসবপরবর্তী চেকআপের নিয়ম প্রয়োজনীয় কাগজপত্র ও শিডিউল সম্পর্কে এখনই জেনে রাখুন যেন চেকআপের সময় আসলে শিশুর মাকে সহায়তা করতে পারেন প্রসব ও শিশুর যত্নের বিষয়গুলো একত্রে শিখে রাখুনপ্রসব শিশুর জন্ম জন্মের পর তার যত্ন এবং শিশুর মায়ের যত্ন—এসব বিষয়ে দুজনে মিলে এখন থেকেই জানাশোনা শুরু করুনশিশুকে জন্মের পর পরই গোসল করাবেন নাশিশুকে জন্মের পর প্রথম কখন গোসল করাবেন সেই বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন সাধারণত একটা সুস্থস্বাভাবিক শিশুকে জন্মের পর প্রথমবার গোসল করানোর আগে অন্তত ২৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে হয়শরীরের তাপমাত্রা হঠাৎ কমে গিয়ে শিশুর যেন কোনো স্বাস্থ্য জটিলতা না হয় সেজন্য অন্তত এই সময়টুকু অপেক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হয়এক পাশে কাত হয়ে ঘুমানএ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারেঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৪৫ সেন্টিমিটার লম্বা সে প্রায় দুইটি জাম্বুরার সমান লম্বা হয়ে গিয়েছে তার ওজন এখন প্রায় ২১ কেজিশিশুর ত্বক দিন দিন আরও মসৃণ হচ্ছেকিছুদিন আগেও আপনার সোণামণির ত্বক কিছুটা কুঁচকানো অবস্থায় ছিলতবে এখন তার ত্বকের নিচে চর্বির স্তর বাড়ছেতাই ধীরে ধীরে শিশুর ত্বক আরও মসৃণ ও তুলতুলে হচ্ছেহাতের আঙুলের নখ তৈরি হয়ে গেছেছোট্ট শিশু এখন হাত দিয়ে কোনো কিছু আঁকড়ে ধরে রাখতে পারেতার হাতের আঙুলের নখগুলো তৈরি হয়ে গেছে এ সপ্তাহে নখ লম্বা হয়ে আঙুলের মাথা পর্যন্ত পৌঁছে যাবেপায়ের আঙুলের নখ বড়ো হচ্ছেহাতের আঙুলের নখের সাথে সাথে শিশুর পায়ের আঙুলের নখগুলোও লম্বা হচ্ছে তবে সেগুলো এখনো আঙুলের মাথা পর্যন্ত পৌঁছায়নি পায়ের নখ পুরোপুরি লম্বা হতে আরও চার সপ্তাহের মতো সময় লাগবে অদ্ভুত স্বপ্নঃএসময়ে আপনার ঘুমের সমস্যা হতে পারে ঘুমের সমস্যার মধ্যে আপনি হয়তো অদ্ভুত বা বিদঘুটে স্বপ্ন দেখতে পারেন গর্ভাবস্থার এই পর্যায়ে এসে অনেকেই তাদের গর্ভাবস্থা প্রসব ও গর্ভের শিশুকে নিয়ে বিভিন্ন ধরনের স্বপ্নদুঃস্বপ্ন দেখতে পারেন এটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না মনে রাখবেন এসব অদ্ভুত স্বপ্ন বা দুঃস্বপ্ন কেবলই স্বপ্ন বাস্তব নয়য়শিশুর জন্মের সাথে সাথে আপনাদের জীবনে কী কী পরিবর্তন ঘটবে তা নিয়ে হয়তো আপনার মাথায় বিভিন্ন চিন্তা ঘুরপাক খাচ্ছে এসব চিন্তা আর হরমোনের প্রভাবই মূলত অদ্ভুত স্বপ্নগুলোর পেছনে দায়ীআপনি এমন কোনো স্বপ্নদুঃস্বপ্ন দেখলে আপনার সঙ্গী ও কাছের মানুষদের সাথে বিষয়টা শেয়ার করতে পারেন এতে মাথায় ঘুরতে থাকা দুশ্চিন্তাগুলো হয়তো পরিষ্কার হয়ে আসবে তারপরেও আপনার এই বিষয়ে দুশ্চিন্তা হলে অথবা মানসিক চাপে থাকলে বিষয়টা ডাক্তারকে জানান হঠাৎ করে কিছু লক্ষণ দূর হয়ে যাওয়াঃআগামী কয়েক সপ্তাহে আপনার হঠাৎ করেই কিছু গর্ভকালীন লক্ষণ উধাও হয়ে গিয়েছে বলে মনে হতে পারে শিশুর মাথা যখন তলপেটের আরও গভীরে নেমে যায় তখন এমন হতে পারে শিশুর তলপেটের গভীরে ডুব দেওয়ার এই ঘটনাকে ডাক্তারি ভাষায় লাইটেনিং বলা হয়শিশু পেটের নিচের দিকে যাওয়ার ফলে শ্বাসপ্রশ্বাসের সময়ে ফুসফুস আবারও পুরোপুরি প্রসারিত হওয়ার সুযোগ পায় তাই যদি এতদিন আপনার শ্বাসকষ্ট হয়ে থাকে তাহলে কিছুটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলতে পারেন এখন থেকে হয়তো শ্বাসকষ্টের সমস্যাটা কমে আসবে সেই সাথে পাকস্থলীর ওপর থেকে চাপ কমবে তাই বুক জ্বালাপোড়ার মতো হজমের সমস্যাও সেরে যেতে পারেএতদিন পর এসব লক্ষণ উপশম হওয়ায় আপনি কিছুটা আরাম পাবেন তবে এসব পরিবর্তনের মানেই যে সন্তান প্রসবের সময় একেবারে ঘনিয়ে এসেছে তা নয় আপনার ছোট্টমণিকে পৃথিবীর আলো দেখাতে আরও কয়েকটা সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হবে যোনিপথে মিউকাস ও শোঃপ্রসবের সময় ঘনিয়ে আসার অন্যতম লক্ষণ হলো যোনিপথ দিয়ে পিচ্ছিল মিউকাস বেরিয়ে আসা যা আগামী কয়েক সপ্তাহে আপনি লক্ষ করতে পারেন একে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় শোগর্ভাবস্থায় নারীদের জরায়ুমুখে মিউকাস জমা থাকে প্রসবের কাছাকাছি সময়ে জরায়ুমুখ যখন খোলা শুরু করে তখন মাসিকের রাস্তা দিয়ে সেই মিউকাস বের হতে পারে এটা একেবারে বেরিয়ে আসতে পারে আবার কয়েক খণ্ডেও বের হতে পারে অনেকসময় শো দেখা গেলেও প্রসব শুরু হতে কয়েকদিন অপেক্ষা করতে হতে পারেপ্রসববেদনা শুরু হলে করণীয়ঃপ্রসববেদনা শুরু হলে যতটা সম্ভব মাথা ঠাণ্ডা রেখে হাসপাতালে যাওয়ার প্রস্তুতি নিন আপনার সাথে যাদের যাওয়ার কথা তাদের ফোন করে প্রসববেদনা ওঠার বিষয়টা জানান কত মিনিট পর পর ব্যথা উঠছে একবার ব্যথা উঠলে কতক্ষণ ধরে ব্যথা থাকছে—এসব লিখে রাখতে পারেন তাহলে প্রসব কতখানি আগাচ্ছে তার একটা ইঙ্গিত পাওয়া যাবেআপনার সব ডাক্তারি কাগজপত্র হাসপাতালের জন্য গোছানো ব্যাগ ও প্রয়োজনীয় টাকাপয়সা সাথে করে নিয়ে যান প্রস্তুতির এই সময়ে আপনার সঙ্গী ও বাড়ির অন্য সদস্যদের সাহায্য নিন যেন দরকারি কিছু বাড়িতে থেকে না যায়হাসপাতালে যাওয়ার পূর্বপ্রস্তুতি সম্বন্ধে আরও জানতে আমাদের এই লেখাটি পড়তে পারেন শিশুকে ফর্মুলা খাওয়ানোঃশিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো মা ও শিশু দুজনের জন্যই সবচেয়ে ভালো অপশনতবে নির্দিষ্ট কিছু রোগসহ বিভিন্ন কারণে সব মায়ের পক্ষে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো সম্ভব হয়ে ওঠে না সেক্ষেত্রে বিকল্প হিসাবে শিশুর জন্য ফর্মুলা ফিড বেছে নিতে পারেনএখন থেকেই বিভিন্ন ধরনের ফর্মুলা ফিড সম্পর্কে জেনে রাখার চেষ্টা করুন ফর্মুলা বানানোর নিয়ম কী বানাতে কী কী সরঞ্জাম লাগে সেগুলো কীভাবে পরিষ্কার রাখবেন বানানোর পর শিশুকে কীভাবে খাওয়ালে ভালো হয় চামচ না কি ড্রপার ব্যবহার করতে হবে—এমন তথ্যগুলো আগে থেকে জেনে রাখলে পরবর্তীতে অনেক ঝামেলা এড়ানো সহজ হবে অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— পেট টানটান বা শক্ত হওয়া একে ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্র্যাকশনও বলা হয় ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পডবে তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এ সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলাপ্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হও অদ্ভুত জিনিস (যেমন মাটি) খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে আর মাত্র কয়েক সপ্তাহ পরই আপনার শিশু পৃথিবীর আলো দেখবে এই সপ্তাহগুলোতে আমরা গর্ভাবস্থায় জেনে রাখা প্রয়োজন এমন সব তথ্যের পাশাপাশি শিশুর জন্মপরবর্তী গুরুত্বপূর্ণ করণীয়গুলোও তুলে ধরছি এতে ডেলিভারির পর থেকেই নতুন শিশু ও শিশুর মায়ের যত্ন সম্পর্কে জানতে পারবেনশিশুর মা কী খাচ্ছেন সেদিকে খেয়াল রাখুনশিশুর মা ঠিকমতো পুষ্টিকর খাবার খাচ্ছেন কি না সেদিকে লক্ষ রাখুন অনেকসময় বাড়ির অন্যদের ভাজাপোড়া কয়েক বেলা করে চাকফি কিংবা তেল–চর্বিযুক্ত অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস থাকতে পারে এমন অভ্যাস থাকলে বাড়ির সবাই মিলে সেটি কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করুনবেশি বেশি ফলমূল শাকসবজি ও পর্যাপ্ত পরিমাণে তৈলাক্ত মাছ খাওয়ার অভ্যাস করুন খাবার ঠিকমতো সেদ্ধ ও স্বাস্থ্যসম্মতভাবে রান্না হচ্ছে কি না সেদিকেও লক্ষ রাখুননবজাতক শিশুকে কখন গোসল করাবেন জেনে নিনশিশুকে কখন প্রথমবারের মতো গোসল করাবেন সেটা ডেলিভারির পর ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিতে ভুলবেন না সাধারণত জন্মের পর অন্তত ২৪ ঘন্টা পার হওয়ার আগে গোসল না করাতে বলা হয়অনেকে বলতে পারেন যে আগে আগে গোসল করালে শিশু ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা পাবে তবে এর পক্ষে কোনো প্রমাণ নেইবরং অন্তত ২৪ ঘন্টা পার হওয়ার পর গোসল করালে শিশুর শরীর অতিরিক্ত ঠাণ্ডা হয়ে মারাত্মক জটিলতার সম্ভাবনা প্রতিরোধ করতে পারবেনঘর গোছানো শুরু করতে পারেননতুন শিশুকে স্বাগত জানাতে এখন থেকেই প্রস্তুত হোন আপনারা হয়তো তার জন্য ছোট্ট একটা খাট বা কট কিনবেন তার খেলার জন্য কিছু জায়গা করবেন ছোট্টমণির জন্য নতুন নতুন খেলনা জামাকাপড় ডায়াপার ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র কিনবেন এসব রাখার জন্য আপনাদের ঘরগুলোকে প্রস্তুত করুনযেসব জিনিস কিংবা আসবাবপত্র বাসায় পড়ে আছে কিন্তু ব্যবহার করা হয় না সেগুলো বাসা থেকে সরানোর ব্যবস্থা করুন আপনার পরিচিত কারও এসবের মধ্যে কোনো কিছু প্রয়োজন কি না সেটা খোঁজ নিতে পারেন তাদের কোনো কিছু কাজে লাগলে দিয়ে দিতে পারেন নাহলে বাড়তি জিনিসগুলো বিক্রি করে দিতে পারেন ধীরে ধীরে বাসা গুছিয়ে শিশুকে স্বাগত জানানোর জন্য প্রস্তুতি নিন যোনিপথের ম্যাসাজ করা শুরু করুনএ সপ্তাহ থেকে যোনিপথের বিশেষ ম্যাসাজ শুরু করুন তাহলে প্রসবের সময়ে এই জায়গাতে ছেঁড়াফাটা হওয়ার সম্ভাবনা কমতে পারেযারা প্রথমবারের মতো মা হচ্ছেন তাদের জন্য এই ম্যাসাজ বিশেষভাবে উপকারীপ্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট দ্রুত হাঁটুনএসময়ে শরীর সুস্থ রাখতে হাঁটাহাঁটি চালিয়ে যান হাঁটার সময়ে প্রথম কয়েক মিনিট স্বাভাবিকভাবে হেঁটে তারপর দ্রুত হাঁটার চেষ্টা করুন প্রতিদিন অন্তত ৩০ মিনিট করে দ্রুত হাঁটুন দ্রুত হাঁটা শেষ হলে ৫–১০ মিনিট স্বাভাবিক গতিতে হেঁটে শেষ করুনএক পাশে কাত হয়ে ঘুমানএ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারেঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৪৬২ সেন্টিমিটার লম্বা—প্রায় দুটি পেঁপের সমান তার ওজন এখন প্রায় ২৪ কেজিছোট্ট শিশু দিন দিন আরও নাদুসনুদুস হচ্ছেগর্ভের শিশুর দ্রুত ওজন বাড়ছে এবং শরীরে বেশি বেশি করে চর্বি জমছেতার হাতপাগুলো দেখতে এখন অনেকটা নাদুসনুদুস লাগেতার ত্বকও কোমল ও তুলতুলে হয়ে যাচ্ছেছোট্ট শিশু গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছেআপনার গর্ভের ভেতরে ছোট্ট শিশু এখন বেশ বড়সড় হয়ে গিয়েছে তার হাতপা মেলে শুয়ে থাকার মতো জায়গা কিছুটা কম তাই সে এখন হাতপা কুঁকড়ে কিছুটা গুটিসুটি হয়ে শুয়ে থাকেশিশু নিয়মিত নড়াচড়া করছেগর্ভের ভেতরে শিশুর নড়াচড়ার জায়গা কমে যাচ্ছে দিন দিন তবে সে ক্রমাগত নড়াচড়া করে যাচ্ছে এখনো আপনি আগের সপ্তাহগুলোর মতোই তার নড়াচড়া অনুভব করতে পারবেনযদি কোনো কারণে মনে হয় শিশুর নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গিয়েছে তাহলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুননড়াচড়া কমে যাওয়া মানেই যে খারাপ কিছু ঘটে গেছে এমন না তবে ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিন্ত হওয়া প্রয়োজননড়াচড়া কমেছে কি না সেটা বুঝতে কষ্ট হলে বাম কাত হয়ে ২ ঘন্টা শুয়ে থাকুন এসময়ে ১০ বারের কম নড়াচড়া টের পেলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন যোনিপথের ম্যাসাজঃ যোনিপথ ও পায়খানার রাস্তার মাঝখানে যে জায়গাটা থাকে তাকে পেরিনিয়াম বলা হয় পেরিনিয়ামে এ সপ্তাহ থেকে নিয়মিত ম্যাসাজ করা শুরু করুন তাহলে প্রসবের সময়ে এই জায়গাতে ছেঁড়াফাটা হওয়ার সম্ভাবনা কমতে পারেযারা প্রথমবারের মতো মা হচ্ছেন তাদের জন্য এই ম্যাসাজ বিশেষভাবে উপকারী পেরিনিয়াম ম্যাসাজ করার জন্য প্রথমে হাতের নখ ছোটো করে কেটে হাত পরিষ্কার করে নিন এবার যোনির ভেতরে দুই হাতের বুড়ো আঙুল ঢোকান এবার আঙুল দিয়ে নিচের দিকে অর্থাৎ পেরিনিয়ামের দিকে ম্যাসাজ করুন ডানেবামে কিংবা ইংরেজি U এর মতো প্যাটার্নে ম্যাসাজ করতে পারেন ম্যাসাজের বিস্তারিত নিয়ম জানতে আমাদের এই লেখাটা পড়তে পারেন গর্ভকালীন চেকআপঃ গর্ভাবস্থার শেষের দিকে যাতায়াত বেশ কষ্টকর হয়ে ওঠে এরপরও শিডিউল অনুযায়ী সবগুলো চেকআপে যাওয়ার চেষ্টা করবেন এতে আপনার ও শিশুর স্বাস্থ্য নিয়ে এমন অনেক গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসতে পারে যা সাধারণ অবস্থায় বোঝা যায় না যেমন আপনার রক্তচাপ কোনো লক্ষণ প্রকাশ করা ছাড়াই বেড়ে যেতে পারে চেকআপের সময়ে করা পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে এই জটিলতাগুলো ধরে ফেলে সময়মতো চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয় পানি ভাঙাঃ গর্ভের ভেতরে শিশু একটা পানিভর্তি থলের মধ্যে থাকে ডাক্তারি ভাষায় এই বিশেষ পানিকে বলা হয় এমনিওটিক ফ্লুইড প্রসবের কাছাকাছি সময়ে থলেটা ফেটে গিয়ে মাসিকের রাস্তা দিয়ে পানি বের হয়ে আসতে পারেএটাকেই অনেকে বলেন পানি ভাঙ্গা এটা প্রসব শুরু হওয়ার একটা লক্ষণ মাসিকের রাস্তা দিয়ে একসাথে অনেক পানি বের হতে পারে আবার একটু একটু করেও চুইয়ে পড়তে পারেআপনার যদি মনে হয় যে আপনার পানি ভাঙছে তাহলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যাবেন নবজাতকের জন্ডিসঃ আপনার ছোট্টমণির জন্মের দ্বিতীয় অথবা তৃতীয় দিনে মৃদু জন্ডিস হতে পারেফলে ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলদেটে দেখাতে পারে জন্মের পর প্রথম সপ্তাহে এমন মৃদু জন্ডিস হওয়া খুব কমন সাধারণত এই জন্ডিস ১০ দিনের মধ্যে নিজে থেকেই সেরে যায়তবে যদি জন্মের প্রথম ২৪ ঘন্টার মধ্যে নবজাতকের জন্ডিস দেখা দেয় তা কোনো গুরুতর জটিলতার লক্ষণ হতে পারেতাই এমন হলে শিশুকে সাথে সাথে ডাক্তার দেখাতে নিয়ে যান অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— পেট টানটান বা শক্ত হওয়া একে ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্র্যাকশনও বলা হয় ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া যেমন মাটি তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে যোনিপথের ম্যাসাজ করতে সাহায্য করুনএই সপ্তাহ থেকে শিশুর মা যোনিপথের বিশেষ ম্যাসাজ শুরু করবেন এতে প্রসবের সময়ে এই জায়গাতে ছেঁড়াফাটা হওয়ার সম্ভাবনা কমতে পারেএই ম্যাসাজ করতে আপনিও সহযোগিতা করতে পারেনম্যাসাজ করতে যোনির ভেতরে দুই হাতের তর্জনী আঙুল ঢোকাবেন ডানেবামে কিংবা ইংরেজি U এর মতো প্যাটার্নে ম্যাসাজ করবেন ম্যাসাজ করার আগে অবশ্যই হাত ধুয়ে নিবেন আঙুলের নখ যাতে লম্বা না থাকে সেদিকেও খেয়াল রাখবেনম্যাসাজে সহায়তা করতে চাইলে দুজনের মধ্যে যথেষ্ট বোঝাপড়া থাকা গুরুত্বপূর্ণ ঠিকভাবে ম্যাসাজ হচ্ছে কি না এবং শিশুর মায়ের ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হচ্ছে কি না তা শিশুর মায়ের কাছ থেকে অবশ্যই জেনে নিবেননবজাতকের ডাক্তারের ব্যাপারে খোঁজখবর নিনশিশুর জন্মের পর বিভিন্ন কারণে তাকে নিয়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়ার প্রয়োজন হতে পারে সেক্ষেত্রে কোন হাসপাতাল কিংবা কোন ডাক্তারের তত্ত্বাবধানে থাকলে সবচেয়ে ভালো হবে সেই বিষয়ে এখন থেকেই তথ্য জোগাড় করা শুরু করুনযেসব ডাক্তারকে দেখানোর সুযোগ আছে তাদের কয়েকজনের ব্যাপারে খোঁজখবর নিন তারা কোথায় বসেন ছুটিতে গেলে কাকে দায়িত্ব দিয়ে যান সিরিয়াল নেওয়ার ব্যবস্থা কী কতদিন আগে থেকে সিরিয়াল দিতে হয়—এই বিষয়গুলো জানা থাকলে সিদ্ধান্ত নেয়া সহজ হবেযদি আপনার আত্মীয় অথবা বন্ধুদের মধ্যে কারও সম্প্রতি বাচ্চা হয়ে থাকে তাহলে তাদের অভিজ্ঞতাও জেনে নিতে পারেন সব জেনে দুজনে আলোচনা করে বিস্তারিত আলোচনা করে তারপর সিদ্ধান্ত নিনচেকআপে সাথে থাকার চেষ্টা করুনগর্ভাবস্থার শেষের দিকের চেকআপগুলো খুব গুরুত্বপূর্ণ এসময়ে ডেলিভারির প্রস্তুতি শিশুর জন্ম ও সম্ভাব্য নানান জটিলতা সংক্রান্ত গুরুত্বপূর্ণ আলোচনা করা হয় তাই শেষের এই কয়েকটা চেকআপে শিশুর মাকে সঙ্গ দেওয়ার চেষ্টা করুন আল্ট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করার প্রস্তুতি নিনসবকিছু ঠিক থাকলে গর্ভকালীন ৩৬তম–৩৮তম সপ্তাহের মধ্যে আপনাকে শেষবারের মতো আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করাতে হবে ডাক্তারের নির্দেশনা অনুযায়ী পরীক্ষার অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখুননিয়মিত পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম করা চালিয়ে যানযোনিপথের আশেপাশের মাংসপেশিগুলো শক্ত করার জন্য আপনি নিয়মিত পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ বা কেগেল ব্যায়াম করা চালিয়ে যান কেননা এই পেশিগুলো দুর্বল হয়ে গেলে হাঁচিকাশির সময় কয়েক ফোঁটা প্রস্রাব বেরিয়ে আসার সমস্যাসহ নানান জটিলতা দেখা দিতে পারেএক পাশে কাত হয়ে ঘুমানএ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারেঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৪৭৪ সেন্টিমিটার লম্বা সে প্রায় একটি তরমুজের সমান লম্বা হয়ে গিয়েছে তার ওজন এখন প্রায় ২৬ কেজিশিশু হয়তো এখন মাথা নিচের দিকে দিয়ে আছেআপনার গর্ভে এখন হয়তো ছোট্ট শিশুর মাথা নীচের দিকে এবং পা ওপরের দিকে আছে এই অবস্থানে থাকলে নরমাল ডেলিভারি করা অনেকটা সহজ হয়এ সপ্তাহ বা আগামী সপ্তাহের মধ্যে বেশিরভাগ শিশুই এই অবস্থানে চলে আসেছোট্ট শিশু শ্বাসপ্রশ্বাস নেওয়ার চর্চা করছেশিশুর ফুসফুস এখন বেশ সুগঠিত হয়ে গিয়েছে জন্মের পর বেশ কয়েক বছর ধরে তা পরিণত হতে থাকবেছোট্ট শিশু নিয়মিত শ্বাস নেওয়ার অনুশীলন চালিয়ে যাচ্ছেগর্ভের ভেতরে থাকা অবস্থায় শিশুকে বাতাস থেকে অক্সিজেন টেনে নিতে হয় নাআপাতত গর্ভফুল তাকে প্রয়োজনীয় অক্সিজেন সরবরাহ করে যাচ্ছেতবে জন্মের সাথে সাথে তাকে এই কাজটা করতে হবে সেজন্য ছোট্ট শিশুর ফুসফুস প্রস্তুত হচ্ছেশিশু নিয়মিত প্রস্রাব করছেগর্ভের ভেতরে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড নামে যে বিশেষ পানির মধ্যে আছে সেই পানি ছোট্ট শিশু এই সময়ে প্রতিদিন বেশ অনেকখানি গিলে ফেলেএই পানি থেকে প্রস্রাব তৈরি হয় এবং শিশু সেই প্রস্রাব ত্যাগ করে[১৫] প্রস্রাবের প্রায় পুরোটাই এখন পানি কারণ মায়ের গর্ভফুল বর্জ্য পদার্থ সরিয়ে নেয় গর্ভের শিশু বেড়ে ওঠার কারণে আপনাকে অতিরিক্ত ওজন বহন করতে হচ্ছে তাই এসময়ে ক্লান্ত লাগা খুব স্বাভাবিক আলট্রাসনোগ্রাম ও অন্যান্য পরীক্ষানিরীক্ষাঃ সাধারণত গর্ভাবস্থার ৩৬তম–৩৮তম সপ্তাহের মধ্যে আপনাকে রক্ত পরীক্ষা প্রস্রাব পরীক্ষা ও আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করাতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী এসব পরীক্ষার অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখবেন এবারের আলট্রাসনোগ্রাম থেকে গর্ভের শিশুর অবস্থান গর্ভফুলের অবস্থান এমনিয়োটিক ফ্লুইড বা শিশুকে ঘিরে থাকা তরলের পরিমাণসহ অনেক কিছু জানা যাবে অ্যাপয়েন্টমেন্টের তারিখ অনুযায়ী পরীক্ষা করানোর প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি নিয়ে রাখুন স্তনের বোঁটায় ব্যথাঃ শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করার পর প্রথম কয়েক সপ্তাহে স্তনের বোঁটায় ব্যথা করতে পারে বুকের দুধ খাওয়াতে থাকলে সাধারণত ব্যথাটা ধীরে ধীরে চলে যায় ব্যথা কমানোর জন্য কয়েকটা কাজ করতে পারেন প্রতিবার খাওয়ানো শেষে একটুখানি বুকের দুধ চেপে বের করে সেটা স্তনের বোঁটায় লাগাতে পারেন স্তনের বোঁটা থেকে স্তনের বাকি অংশে ব্যথা ছড়ালে হালকা গরম সেঁক দিতে পারেন এসবের পাশাপাশি খেয়াল রাখবেন বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ে শিশুর মুখের ভেতর যেন শুধুমাত্র স্তনের বোঁটা না থাকে শিশু মুখ বড় করে হা করে স্তনের বোঁটাসহ বোঁটার আশেপাশের কালো অংশও মুখের ভেতর নিলে স্তনের বোঁটায় ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা কমবে ঘর গোছগাছ করাঃ এসময়ে এসে আপনার ক্লান্ত লাগা স্বাভাবিক তবে এর মধ্যেই আপনার হঠাৎ করে গায়ে বেশ শক্তি আছে বলে মনে হতে পারে পুরোদমে ঘরবাড়ি গোছানোর ইচ্ছা জাগতে পারেছোট্টমণির জন্য কিনে রাখা জামাকাপড় এখনই ভাঁজ করতে হবে কিংবা অনেক বছর ধরে অগোছালো কোনো ড্রয়ার বা আলমারি এই মুহূর্তেই পরিষ্কার করতে হবে—এমন তাড়না অনুভব করতে পারেন অনেক হবু মাই এমন অভিজ্ঞতার মধ্য দিয়ে যাননতুন শিশুকে স্বাগত জানানোর জন্য একটা স্বস্তির পরিবেশ সৃষ্টির ইচ্ছা থেকে এমন হতে পারে আপনি একা একা অতিরিক্ত পরিশ্রম না করে ঘর গোছানোর কাজগুলো বাসার সবাই মিলে ভাগ করে নিতে পারেন গর্ভের শিশুকে ঘুরিয়ে মাথা নিচের দিকে আনাঃ আপনার শিশু হয়তো ইতোমধ্যে তলপেটের গভীরে মাথা ঢুকিয়ে প্রসবের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছে তবে শিশুর মাথা যদি নিচের দিকে না থাকে তাহলে ডাক্তার একটা বিশেষ পদ্ধতিতে শিশুর অবস্থান পরিবর্তন করার পরামর্শ দিতে পারেন এই পদ্ধতিকে ডাক্তারি ভাষায় এক্সটারনাল সেফালিক ভার্সন বলা হয় সাধারণত ৩৭তম সপ্তাহ পূর্ণ হবার পর প্রয়োজনে এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় এই পদ্ধতির মাধ্যমে ডাক্তার পেটে বিশেষ পদ্ধতিতে আলতোভাবে চাপ দিয়ে গর্ভের শিশুকে ঘোরানোর চেষ্টা করেন এভাবে শিশুর মাথা নিচে ও পশ্চাৎদেশ ওপরে—এমন অবস্থানে আনার চেষ্টা করা হয় কারণ এটাই নরমাল ডেলিভারির জন্য সবচেয়ে সুবিধাজনক অবস্থানএই বিশেষ পদ্ধতি প্রায় ৫০ ক্ষেত্রে সফল হয় অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— পেট টানটান বা শক্ত হওয়া একে ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্র্যাকশনও বলা হয় ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পডে তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস (যেমন মাটি) খাওয়ার ইচ্ছা হও তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে রক্ত পরীক্ষা ও আলট্রাসনোগ্রামের কথা মনে করিয়ে দিন সবকিছু ঠিকঠাক থাকলে আগামী তিন সপ্তাহের মধ্যে শিশুর মাকে শেষবারের মতো রক্ত পরীক্ষা প্রস্রাব পরীক্ষা ও আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা করাতে হবে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষাগুলোর অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিয়ে রাখার কথা মনে করিয়ে দিন আগামী দিনগুলোতে অর্থাৎ ৩৬তম সপ্তাহ থেকে প্রসবের আগ পর্যন্ত সপ্তাহে একবার করে সঙ্গীর চেকআপে যাওয়ার বিষয়টি মাথায় রাখুন শিশুর মায়ের মতো লক্ষণ আপনার মধ্যেও দেখা দিতে পারে বিস্ময়কর হলেও সত্যি শিশুর মায়ের মতো হবু বাবাদের মধ্যেও গর্ভাবস্থার বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারেডাক্তারি ভাষায় একে কুভাড সিনড্রোম বলা হয় এসময়ে আপনার বমি ভাব বমি বুক জ্বালাপোড়া কোমর ব্যথা ও গর্ভকালীন অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিতে পারে গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে এমনটা বেশি দেখা যায় এবং সাধারণত শিশুর জন্মের পর এসব লক্ষণ চলে যায়অফিস থেকে ছুটি নেওয়ার পরিকল্পনা ঠিক করুনআপনি হয়তো বাবা হিসেবে আপনার সন্তানের জন্মের সময়ে উপস্থিত থাকতে চান জন্মের পর শিশুর ও শিশুর মায়ের সাথে বেশি করে সময় কাটাতে চান তাদের দেখভাল করতে চান ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ মাথায় রেখে কাজ থেকে কোন সময়টায় ছুটি নিবেন সেটা এখনই ঠিক করে রাখুনকোন সময়ে ছুটি নিলে সবচেয়ে ভালো হয় সেই বিষয়ে শিশুর মায়ের সাথে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নিন আপনি চাকুরীজীবী হয়ে থাকলে অফিসের ছুটির নিয়ম জেনে নিয়ে সেই অনুযায়ী ছুটির আবেদন করে রাখতে পারেনঅফিসের নিয়ম অনুযায়ী ছুটির আবেদনের জন্য প্রয়োজনীয় কাগজপত্র এখন থেকেই সংগ্রহ করে রাখুন ছুটির কমপক্ষে কতদিন আগে আবেদন জমা দিতে হবে সেটা জেনে ক্যালেন্ডারে বসিয়ে ফেলুন যেন এই বিষয়ে পরবর্তীতে কোনো সমস্যা না হয় শিশুকে জন্মের পর অবশ্যই ভিটামিন কে ও বিসিজি টিকা দিনশিশুর জন্মের পর পর তাকে ভিটামিন কে ইনজেকশন দিতে হয়সেই সাথে যক্ষ্মা বা টিবি রোগজনিত জটিলতা প্রতিরোধের জন্য এসময়ে বিসিজি টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করবেননিয়মিত মাছ খাওয়া চালিয়ে যানগর্ভাবস্থায় মা নিয়মিত মাছ খেলে শিশুর ব্রেইনের বিকাশ ভালো হয় আইকিউ বাড়ে কথাবার্তায় পটু হয়তাই সপ্তাহে অন্তত ২৮০ গ্রামের মতো মাছ খাওয়ার চেষ্টা করবেন এর মধ্যে অর্ধেক পরিমাণ তৈলাক্ত মাছ খাবেনযেমন ইলিশ চাপিলা ও পুঁটি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়েও এভাবে মাছ খাওয়া চালিয়ে যাবেনএক পাশে কাত হয়ে ঘুমানএ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারেঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৪৮৬ সেন্টিমিটার লম্বা সে প্রায় দুইটি ডাবের সমান লম্বা হয়ে গিয়েছে তার ওজন এখন প্রায় ২৯ কেজিছোট্ট শিশু এখন নানান ধরনের মুখভঙ্গি করতে পারেআপনার ছোট্ট শিশু বিভিন্ন ধরনের মুখভঙ্গি করতে শিখে ফেলেছেসে হয়তো এখন চোখমুখ কুঁচকে মুখে একটা বিরক্তির ভাব নিয়ে কিংবা হাসিমাখা মুখে আপনার গর্ভের ভেতরে শুয়ে আছেপরিপাক নালিতে মেকোনিয়াম জমা হচ্ছেজন্মের পর শিশু প্রথমবারের মত যে পায়খানা করবে তা তার পরিপাক নালিতে জমা হচ্ছেশিশুর প্রথম পায়খানা পিচ্ছিল হয় আর দেখতে সাধারণত গাড় সবুজ রঙের হয়গর্ভে থাকাকালীন সময়ে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড ঝরে যাওয়া গায়ের লোমসহ আরও যা যা জিনিস শিশু খেয়ে ফেলে সেসব মিলে পরিপাক নালীতে এই তরল পায়খানা তৈরি হয় একে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় মেকোনিয়ামশিশুর মস্তিষ্ক বিকশিত হচ্ছেগর্ভের ভেতরে শিশুর মস্তিষ্ক সুগঠিত হচ্ছেশুনে অবাক লাগতে পারে তবে জন্মের পরও প্রায় দুই দশক ধরে তার মস্তিষ্ক বিভিন্নভাবে বিকশিত ও পরিণত হতে থাকবে প্রসবের পরের যোনিপথের স্রাবপ্রসবের পর কয়েক সপ্তাহ আপনার যোনিপথ দিয়ে বিশেষ এক ধরনের স্রাব যাবেপ্রথমদিকে সাধারণত বেশ ভারী রক্তস্রাব যায়[এসময়ে ভালো শোষণ ক্ষমতার স্যানিটারি ন্যাপকিন বা ম্যাটারনিটি প্যাড ব্যবহার করতে হয় যা এখনই সংগ্রহ করে রাখতে পারেনসময়ের সাথে সাথে প্রসবপরবর্তী রক্তস্রাবের পরিমাণ কমতে থাকে রঙও বাদামী হতে থাকে সাধারণত ৬ থেকে ৮ সপ্তাহের মধ্যে এই স্রাব যাওয়া বন্ধ হয়ে যায়[তবে যদি ভারি রক্তপাত হয় যেমন ঘন্টায় দুইটা করে প্যাড ভিজে যাচ্ছে তাহলে দ্রুত হাসপাতালে যাবেনশিশুর জন্মের পর ভিটামিন কেভিটামিন কে আমাদের শরীরে রক্ত জমাট বাধতে সাহায্য করে কিন্তু নবজাতক শিশুর শরীরে ভিটামিন কে এর মাত্রা কম থাকে[ভিটামিন কে এর অভাব হলে নবজাতক শিশুর মারাত্মক রক্তক্ষরণ হতে পারেতাই জন্মের পর পর নবজাতক শিশুকে ভিটামিন কে ইনজেকশন দিতে হয়ভিটামিন কে শিশুর রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা অনেকখানি কমিয়ে আনতে পারেতাই আপনার শিশুকে জন্মের পর পর ভিটামিন কে দেয়া নিশ্চিত করুন কখনো কখনো ইনজেকশনের বদলে মুখে খাওয়ার ভিটামিন কে দেওয়া হতে পারেশিশুর বিসিজি টিকাজন্মের পর শিশুকে বিসিজি টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা করুন বিসিজি টিকা যক্ষ্মা রোগজনিত জটিলতা থেকে সুরক্ষা দেয়সাধারণত জন্মের পর পর ১ ডোজ বিসিজি টিকা নিতে হয় তাই জন্মের পর ছোট্টমণির বিসিজি টিকা নেওয়া যেন বাদ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন সরকারি হাসপাতালে সাধারণত বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকেডেলিভারির পর পর আপনার শরীরটা হয়তো ক্লান্ত থাকবে এই কথাটা মাথায় নাও থাকতে পারে তাই এখনই শিশুর বাবাকে ব্যাপারটা জানিয়ে রাখতে পারেন তিনি ছোট্টমণিকে জন্মের পর পর বিসিজি টিকা আর ভিটামিন কে ইনজেকশন দেওয়ানোর ব্যবস্থা করতে পারবেনগর্ভকালীন চেকআপআপনাকে এখন প্রতি সপ্তাহে একবার করে চেকআপে যেতে হবে তবে গর্ভাবস্থায় কোনো জটিলতা না থাকলে ডাক্তার আপনাকে এর চেয়ে কম ঘন ঘন চেকআপ করাতে বলতে পারেনচেকআপের শিডিউলটা জেনে নিয়ে পরবর্তী চেকআপের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে ফেলুন চেকআপে যাওয়ার সময়ে প্রয়োজনীয় সব কাগজ প্রেসক্রিপশন ও পরীক্ষানিরীক্ষার রিপোর্ট নিতে ভুলবেন নাপ্রসবপরবর্তী কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলসপ্রসবের পর আপনার কয়েকদিন পায়খানা নাও হতে পারে এসময়ে যেন কোষ্ঠকাঠিন্য না হয় সেজন্য বেশি বেশি ফাইবার বা আঁশসমৃদ্ধ খাবার ও প্রচুর পানি খাবেন দিনে কিছুক্ষণ হাঁটাহাঁটি করলেও সেটা কোষ্ঠকাঠিন্য কমাতে সাহায্য করতে পারেআপনার যদি সেলাই দেওয়া থাকে তাহলে পায়খানা করার সময়ে কয়েকটা পরিষ্কার টিস্যু একসাথে ভাঁজ করে প্যাডের মতো বানিয়ে সেলাইয়ের জায়গার ওপরে ধরতে পারেন এতে আরাম লাগতে পারেপ্রসবের পর কোষ্ঠকাঠিন্যের পাশাপাশি পাইলস হওয়াও খুব পরিচিত সমস্যা তবে এটা সাধারণত কয়েকদিনের মধ্যে দূর হয়ে যায়পাইলস সম্বন্ধে আরও জানতে আমাদের এই লেখাটি পড়তে পারেন অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— পেট টানটান বা শক্ত হওয়া একে ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্র্যাকশনও বলা হয় ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস (যেমন মাটি) খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে ডেলিভারির সময় একেবারেই কাছে চলে এসেছে এখন আমরা ডেলিভারি সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি শিশুর জন্মের পর পর কোন কাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেটাও তুলে ধরছি এতে আপনি ডেলিভারির পর থেকেই নতুন শিশু ও শিশুর মায়ের যত্ন নিতে পারবেনপ্রসবকালীন সময়ে শিশুর মায়ের পাশে থাকুনপ্রসবকালীন সময়ে শিশুর মায়ের পাশে থেকে তাকে পুরোটা সময় জুড়ে সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করবেন সেই সময়ের ব্যথা ও কষ্ট থেকে মনোযোগ সরিয়ে নেওয়ার উপায়গুলো এখনই ভেবে রাখুনতাকে বেশি বেশি মানসিক উৎসাহ দেওয়ার চেষ্টা করবেন তার জন্য হালকা ঠাণ্ডা পানি ও কিছু নাস্তা সাথে রাখতে পারেন তাকে বাথরুমে যাওয়ার কথা মনে করিয়ে দিতে পারেন পাশাপাশি তাকে সাহস ও ভরসা দেওয়ার চেষ্টা করবেনশিশুর মায়ের সমস্যাগুলো ডাক্তারের কাছে তুলে ধরার চেষ্টা করুনপ্রসবকালীন সময়ে শিশুর মায়ের নানান ধরনের সমস্যা হতে পারে তার পাশে থেকে সেগুলো বোঝার এবং জানার চেষ্টা করুন ডাক্তারকে সেগুলো সম্পর্কে অবহিত করুন কেননা ব্যথা ও অস্বস্তির কারণে অনেক কিছুই হয়তো শিশুর মায়ের বলতে খেয়াল থাকবে নাশিশুকে ভিটামিন কে ও বিসিজি টিকা দেওয়া নিশ্চিত করুনজন্মের পর পর শিশুকে ভিটামিন কে ইনজেকশন ও বিসিজি টিকা দেওয়া জরুরিডেলিভারির পর হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার আগে এগুলো শিশুকে দেয়া হয় সেদিকে খেয়াল রাখবেনভিটামিন কে রক্ত জমাট বাঁধতে সাহায্য করে মারাত্মক কোনো রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয়কখনো কখনো ইনজেকশনের বদলে মুখে খাওয়ার ভিটামিন কে দেওয়া হতে পারেবিসিজি টিকা যক্ষ্মা রোগজনিত জটিলতা থেকে সুরক্ষা দেয়[সাধারণত জন্মের পর পর এক ডোজ বিসিজি টিকা নেওয়াই যথেষ্ট সরকারি হাসপাতালে সাধারণত বিনামূল্যে এই টিকা দেওয়ার ব্যবস্থা থাকেশিশুর জন্মের সুসংবাদ সবাইকে কীভাবে জানাবেন সেটা ঠিক করে রাখুনশিশুর জন্মের পর পর আপনি হয়তো অনেকগুলো গুরুত্বপূর্ণ কাজে ব্যস্ত হয়ে যাবেন তাই শিশুর জন্মের সংবাদ জানানোর দায়িত্বটা কাকে দেওয়া যায় সেটা আগেই পরিকল্পনা করে রাখুনহতে পারে যে আপনি শিশুর জন্মের সাথে সাথে কয়েকজন কাছের মানুষকে সংবাদটা জানালেন তখন তারা পরিবারের অন্য সদস্য ও কাছের বন্ধুদের সার্কেলে খবরটা জানিয়ে দিতে পারবেনশিশুর মাকেও জিজ্ঞাসা করে রাখুন যে তিনি প্রথমে কাদের সুসংবাদটা জানাতে চান এবং সবাইকে জানানোর দায়িত্ব কাকে দিতে চান প্রসবের পর শিশুর মা হয়তো পরিশ্রান্ত থাকবেন তখন আপনিই তার নির্বাচিত মানুষগুলোর কাছে সংবাদটা পৌঁছে দিতে পারবেন বুকের দুধ খাওয়ানোর সঠিক নিয়ম শিখুনসঠিকভাবে বুকের দুধ খাওয়ানোর জন্য শিশুর মাথা ও শরীর সোজা এক লাইনে রাখবেন ছোট্ট সোনামণিকে এমনভাবে রাখবেন যাতে তার নাক আপনার স্তনের বোঁটা বরাবর থাকে আর তার ঠোঁটের সাথে আপনার স্তনের বোঁটার ঘষা লাগে এভাবে শিশু নিজেই মুখ হা করে খুলে বুকের দুধ খেতে শুরু করবে আপনি নিজে থেকে শিশুর মুখের ভেতরে স্তনের বোঁটা ঢুকিয়ে দিবেন নাপ্রতি সপ্তাহে চেকআপে যানগর্ভাবস্থার এসময়টায় সাধারণত প্রতি সপ্তাহে একবার করে চেকআপে যেতে হয় প্রসবের আগ পর্যন্ত এভাবে চেকআপে যাওয়া চালিয়ে যেতে হবে তবে গর্ভাবস্থায় কোনো জটিলতা না থাকলে ডাক্তার আপনাকে এর চেয়ে কম ঘন ঘন চেকআপ করাতে বলতে পারেনএক পাশে কাত হয়ে ঘুমানএ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারেঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেপাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৪৯৮ সেন্টিমিটার লম্বা প্রায় একটা লাউয়ের সমান তার ওজন এখন প্রায় ৩ কেজি পার হয়েছেপায়ের আঙ্গুলের নখ তৈরি হয়ে গেছেএ সপ্তাহে শিশুর পায়ের আঙ্গুলের নখ লম্বা হয়ে আঙ্গুলের মাথা পর্যন্ত পৌঁছে যাবেহাতের আঙ্গুলের নখ আরও আগেই লম্বা হয়ে আঙ্গুলের মাথা পর্যন্ত পৌঁছে গেছেগায়ের নরম তুলতুলে লোম পড়ে গেছেগর্ভাবস্থার বেশ কয়েক মাস জুড়ে শিশুর গায়ে নরম তুলতুলে লোমের আবরণ ছিলকয়েক সপ্তাহ আগে ল্যানুগো নামক সেই লোমগুলো পড়ে যেতে শুরু করেএখন তার গায়ে সেই নরম তুলতুলে লোম প্রায় সবটুকুই পড়ে গেছে[তবে শিশুর দেহে আবারও নতুন লোম গজাবেশিশু এখন আঁকড়ে ধরতে পারেএখনো আপনি বেশ ভালোভাবেই গর্ভের শিশুর নড়াচড়া বুঝতে পারবেন শিশু এখন কোনোকিছু ভালোভাবে আঁকড়ে ধরতে পারেপা দিয়ে জোরেশোরে লাথিও মারতে পারেযদি কোনো কারণে মনে হয় শিশুর নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গিয়েছে তাহলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুননড়াচড়া কমে যাওয়া মানেই যে খারাপ কিছু ঘটে গেছে এমন না তবে ডাক্তার দেখিয়ে নিশ্চিন্ত হওয়া প্রয়োজননড়াচড়া কমেছে কি না সেটা বুঝতে কষ্ট হলে বাম কাত হয়ে ২ ঘন্টা শুয়ে থাকুন এসময়ে ১০ বারের কম নড়াচড়া টের পেলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো নিয়ে আপনার আগেভাগে যত বেশি জানাশোনা থাকবে ততই ভালো বিশেষ করে যদি শিশুর জন্ম হওয়ার আগের এই সময়টায় সঠিক নিয়ম ও টিপসগুলো জেনে নেন তাহলে জন্মের পর ছোট্টমণিকে দুধ খাওয়ানোর ব্যাপারটা অনেকখানি সহজ হয়ে আসবেবুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করাশিশু জন্মের পর প্রথম কয়েকদিন আপনার কাছ থেকে যেই বুকের দুধ পাবে সেটাকে বলে শালদুধশালদুধ সাধারণত সোনালিহলুদ রঙের হয় এবং বেশ ঘন হয় এই ঘন দুধে পুষ্টি উপাদানের ঘনত্বও বেশি তাই প্রতিবার খাওয়ানোর সময়ে পরিমাণটা যদি খুব বেশি নাও হয় তবুও এখান থেকেই ছোট্টমণির পুষ্টির চাহিদা পূরণ হয়ে যাবেকয়েকদিন পর স্তনে শালদুধের পরিবর্তে আরেকটু পাতলা দুধ তৈরি হবে পরিমাণে বেশি দুধ আসবেশিশু যত বেশি দুধ পান করবে মায়ের শরীর তত বেশি করে দুধ তৈরি করতে থাকবে এভাবে মায়ের শরীর শিশুর চাহিদা পূরণ করতে নিজেকে প্রস্তুত রাখেশিশু পর্যাপ্ত দুধ পাচ্ছে কি না বোঝার উপায়জন্মের পর শিশু ঠিকমতো বুকের দুধ পাচ্ছে কি না সেটা বোঝার একটা সহজ উপায় হলো তার ভেজা ন্যাপি বা ডায়াপার গোণা শিশু জন্মের পর প্রথম ৪৮ ঘন্টায় দিনে মাত্র ১–২টা করে ন্যাপি ভেজাবেসময়ের সাথে সে আরও ঘন ঘন ন্যাপি বা ডায়াপার ভেজানো শুরু করবেজন্মের ষষ্ঠ দিন থেকে শিশু প্রতি ২৪ ঘন্টায় অন্তত ৬টা ন্যাপি ভেজানো স্বাভাবিকএর চেয়ে কম ন্যাপি ভেজানোর অর্থ হয়তো শিশু ঠিকমতো বুকের দুধ পাচ্ছে না কাঁথা ব্যবহার করলে কয়বার কাঁথা ভিজছে সেটা হিসাব করতে পারেনসাঁতার কাটাগর্ভাবস্থায় ওজন বৃদ্ধি ও পেট বড় হওয়ার কারণে সাধারণ চলাফেরা ও ভারসাম্যে যে সমস্যা হয় পানিতে সাঁতার কাটার সময়ে সেই সমস্যা থাকে না বরং শরীর হালকা লাগে তাই আপনি হয়তো সাঁতার বেশ উপভোগ করবেন সুযোগ থাকলে তাই এখন নিয়মিত ব্যায়াম হিসেবে সাঁতার কাটতে পারেন গর্ভকালীন চেকআপঃগর্ভাবস্থার শেষের দিকে সাধারণ যাতায়াতও বেশ কষ্টকর হয়ে ওঠে এরপরেও শিডিউল অনুযায়ী সবগুলো চেকআপে যাওয়ার চেষ্টা করবেন আপনাকে এখন প্রতি সপ্তাহে একবার করে চেকআপে যেতে হবে তবে গর্ভাবস্থায় কোন জটিলতা না থাকলে ডাক্তার আপনাকে এর চেয়ে কম ঘন ঘন চেকআপ করাতে বলতে পারেনচেকআপের শিডিউলটা জেনে নিয়ে পরবর্তী চেকআপের জন্য অ্যাপয়েন্টমেন্ট করে ফেলুন গত চেকআপে কোনো পরীক্ষা করিয়ে থাকলে সেগুলোর রিপোর্টসহ প্রয়োজনীয় কাগজপত্র সাথে নিয়ে যাবেন অন্যান্য লক্ষণঃএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— পেট টানটান বা শক্ত হওয়া একে ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্র্যাকশনও বলা হয় ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া যেমন মাটি তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে ডেলিভারির সময় একেবারেই কাছে চলে এসেছে এখন আমরা ডেলিভারি সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি শিশুর জন্মের পর পর কোন কাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেটাও তুলে ধরছি এতে আপনি ডেলিভারির পর থেকেই নতুন শিশু ও শিশুর মায়ের যত্ন নিতে পারবেনইমারজেন্সির জন্য প্রস্তুত থাকুনগর্ভাবস্থার বিপদচিহ্ন ও করণীয়গুলো জেনে রাখা জরুরি যোনিপথে রক্তপাত বা বাচ্চার নড়াচড়া কমে যাওয়ার মতো জরুরি অবস্থা সৃষ্টি হলে শিশুর মাকে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে নেওয়ার প্রয়োজন হবে এমন অবস্থায় কোন হাসপাতালে বা ডাক্তারের কাছে যাবেন সেটা নিয়ে আলোচনা করে আগেভাগে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখুনযানবাহনের বিষয়টাও ঠিক করে রাখুন গাড়িচালকের ফোন নাম্বার ও দুইএকটা অ্যাম্বুলেন্সের নাম্বার আগে থেকেই দুজনের ফোনে সেভ করে রাখুনএসব ইমারজেন্সির জন্য আলাদাভাবে ঘরের একটা জায়গায় টাকা জমিয়ে রাখতে পারেন যেন প্রয়োজনের সময়ে ব্যাংক কিংবা মোবাইল থেকে তোলার ঝামেলা না থাকে এ ছাড়া শিশুর মায়ের সাথে কথা বলে চিকিৎসার কাগজগুলো সময়ে সময়ে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় গুছিয়ে রাখতে পারেন এতে জরুরি অবস্থায় তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালের উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়তে পারবেনবাকি সন্তানদের দেখে রাখার ব্যবস্থা করুনআপনাদের নিশ্চয়ই ডেলিভারি কোথায় হবে কীভাবে হবে সিজার হবে না নরমাল ডেলিভারি হবে হাসপাতালে কতদিন থাকতে হবে—এসব বিষয়ে ইতোমধ্যে ভালো একটা ধারণা তৈরি হয়েছেসেই সময়ে বাসায় আপনাদের আরও বাচ্চাকাচ্চা আপনাদের ওপর নির্ভরশীল বয়স্ক মানুষ কিংবা পোষা প্রাণী থাকলে তাদের দেখভালের দায়িত্ব কার কাছে থাকবে সেই ব্যাপারেও এখনই চিন্তাভাবনা শুরু করুন আপনজনদের মধ্যে নিরাপদ ও দায়িত্বশীল কয়েকজনের মাঝে এই দেখভালের দায়িত্ব ভাগ করে দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেনশিশু ঠিকমতো দুধ পাচ্ছে কি না বোঝার উপায় শিখে রাখুনজন্মের পর শিশু ঠিকমতো বুকের দুধ পাচ্ছে কি না সেটা বোঝার একটা সহজ উপায় হলো তার ভেজা ন্যাপি বা ডায়াপার গোণা জন্মের ষষ্ঠ দিন থেকে শিশু প্রতি ২৪ ঘন্টায় অন্তত ৬টা ন্যাপি ভেজানো স্বাভাবিক[১৯] রুমাল বা কাঁথা ব্যবহার করলে কয়বার সেগুলো ভিজছে সেটা হিসাব করতে পারেনশিশু কোন বয়সে কয়টা করে ন্যাপি ভেজানোর কথা ন্যাপির সংখ্যা কম হলে বা ঠিকমতো দুধ না পেলে করণীয় কী—এমন গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্নের উত্তর এখন থেকেই জেনে রাখুনআশেপাশে কোনো সুইমিং পুল আছে কি না খোঁজ নিনএসময়ে সাঁতার কাটা শিশুর মায়ের জন্য খুবই ভালো ব্যায়াম আপনাদের বাসা কিংবা কর্মক্ষেত্র থেকে সুবিধাজনক দূরত্বে এমন কোনো সুইমিং পুল আছে কি না যেখানে শিশুর মা স্বাচ্ছন্দ্যে সাঁতার কাটতে পারবেন সেই ব্যাপারে খোঁজ নিতে পারেনসম্ভব হলে দুজনে একসাথে সাঁতার কাটতে পারেন এতে দুজনেরই স্বাস্থ্যের উপকার হবে পাশাপাশি একত্রে কিছু সুন্দর সময় কাটানো হবে সাঁতারও হয়তো বেশি উপভোগ্য হয়ে উঠবে প্রসবপরবর্তী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ঠিক করে ফেলুনপ্রসবের পর শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালেও এমনকি মাসিক শুরু না হলেও আবারও গর্ভধারণ করে ফেলার সম্ভাবনা থাকে তাই প্রসবপরবর্তী সময়ে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করা গুরুত্বপূর্ণএক পাশে কাত হয়ে ঘুমানএ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারে[১][২] ঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৫০৭ সেন্টিমিটার লম্বা—প্রায় দুইটা আনারসের সমান তার ওজন প্রায় ৩৩ কেজি হয়ে গিয়েছেগর্ভে পানির পরিমাণ বেড়ে ১ লিটার হবেএ সপ্তাহে আপনার গর্ভে পানির পরিমাণ হবে ১ লিটারের কাছাকাছি[৬] একসময় পানির পরিমাণ ছিল মাত্র ৩০ মিলিলিটারের মতো[৭] ছোট্ট শিশু অ্যামনিওটিক ফ্লুইড নামের এই বিশেষ ধরনের পানির মধ্যে গুটিসুটি হয়ে শুয়ে আছে অবশ্য এখন যেকোনো মুহূর্তে আপনার পানি ভাঙতে পারেশিশু জন্মের জন্য প্রস্তুত হচ্ছেছোট্ট সোনামণি জন্মের জন্য এখন প্রায় প্রস্তুত এ সপ্তাহ পূর্ণ হয়ে গেলে শিশুকে ফুল টার্ম হিসেবে বিবেচনা করা হবে[৮] অর্থাৎ সে মায়ের গর্ভে বেড়ে ওঠার জন্য পর্যাপ্ত সময় পেয়েছে জন্মের পর শিশুর ফুসফুস ব্রেইনসহ আরও অন্যান্য অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বিকশিত হতে থাকবেশিশুর হার্ট দ্রুত স্পন্দিত হচ্ছেএসময়ের দিকে শিশুর হার্ট মিনিটে প্রায় ১৩০ বার স্পন্দন করে আপনার হার্টের তুলনায় ছোট্ট শিশুর হার্ট বেশ দ্রুত গতিতে চলছে আপনার হার্ট সাধারণত মিনিটে ৬০ থেকে ১০০ বার স্পন্দিত হয় এ সপ্তাহটা পার হলে আপনার প্রেগন্যান্সিকে ফুল টার্ম প্রেগন্যান্সি হিসেবে বিবেচনা করা হবেএর অর্থ হলো শিশু পরিপূর্ণভাবে বেড়ে ওঠার জন্য গর্ভের ভেতরে পর্যাপ্ত সময় পেয়েছেডেলিভারির জন্য শিশুর উপযুক্ত অবস্থানআপনার শিশু হয়তো বাইরের পৃথিবীতে আসার জন্য একেবারে মুখিয়ে আছে খুব সম্ভবত সে এখন প্রসবের রাস্তার দিকে মাথা দিয়ে আছে এসময়ে বেশিরভাগ শিশু মাথা নিচের দিকে রেখে মায়ের কোমরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে থাকে যা ডেলিভারির জন্য সবচেয়ে উপযোগী অবস্থানশিশুর মাথা তলপেটের দিকে ঢুকে যাওয়ার ঘটনাকে ডাক্তারি ভাষায় এঙ্গেইজমেন্ট বলে এর ফলে আপনার পেট আগের চেয়ে আকারে কিছুটা ছোটো হয়ে যেতে পারেপ্রসবের পর পিরিয়ড শুরু হওয়াডেলিভারির পর পিরিয়ড শুরু হতে একেকজনের একেকরকম সময় লাগে তাই আপনার ঠিক কতদিন পর পিরিয়ড শুরু হবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা কঠিন শিশুকে যদি নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ান তাহলে যতদিন বুকের দুধ খাওয়াবেন ততদিন পিরিয়ড বন্ধ থাকতে পারে আর যদি শিশুকে বুকের দুধ না খাওয়ান তাহলে ডেলিভারির ৬–৮ সপ্তাহের মধ্যেই পিরিয়ড শুরু হয়ে যেতে পারেডেলিভারির পর আবারও মা হওয়াডেলিভারির মাত্র ৩ সপ্তাহের মধ্যে আবারও গর্ভবতী হওয়া সম্ভব যদিও এমন হওয়ার সম্ভাবনা খুব কম প্রসবের পর শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালেও এমনকি মাসিক শুরু না হলেও গর্ভধারণের একটা সম্ভাবনা থাকে তাই ডেলিভারির পর ৩ সপ্তাহের মধ্যে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য উপযুক্ত পদ্ধতি ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হয়শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালে কম্বাইন্ড জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল ব্যবহারের আগে সাধারণত অন্তত ৬ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে হয় তবে ডেলিভারির পর যেকোনো সময়ে কাঠি পদ্ধতি বা ইমপ্ল্যান্ট জন্মনিয়ন্ত্রক ইনজেকশন মিনি পিল অথবা আপনার সঙ্গীর জন্য কনডম বেছে নিতে পারেনএই পদ্ধতিগুলো সঠিক নিয়মে ব্যবহার করতে পারলে খুবই কার্যকর এর মধ্যে ইমপ্ল্যান্ট ইনজেকশন কম্বাইন্ড পিল ও মিনি পিল ৯৯ এর চেয়েও বেশি কার্যকর আর সঠিক ব্যবহারে কনডম ৯৮ সুরক্ষা দিতে পারবেডেলিভারির পর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি সম্পর্কে চেকআপের সময়ে ডাক্তারের কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে নিনপরিকল্পিত সিজারিয়ান সেকশনডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী যদি আগে থেকে সিজার করানোর পরিকল্পনা থাকে তাহলে সম্ভবত গর্ভাবস্থার অন্তত ৩৯তম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হবে অর্থাৎ আগামী সপ্তাহে সিজার করার তারিখ হতে পারে ৩৯তম সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয় কারণ শিশুর ফুসফুস এই সময়টুকু কাজে লাগিয়ে পুরোপুরি বেড়ে ওঠার সুযোগ পায়গর্ভকালীন চেকআপপ্রেগন্যান্সি সাধারণত ৪০ সপ্তাহ ধরে চলে তবে বেশিরভাগ নারী ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখের ১ সপ্তাহ আগে কিংবা পরে সন্তান জন্মদান করেন শেষের এই সময়টায় আপনার ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে শিডিউল অনুযায়ী চেকআপে যাওয়া জরুরিসাধারণত এই পর্যায়ে প্রতি সপ্তাহে চেকআপে যেতে বলা হয় আপনারও এমন শিডিউল হলে এই সপ্তাহে চেকআপ করানোর ব্যবস্থা করে ফেলুনঅন্যান্য লক্ষণএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— পেট টানটান বা শক্ত হওয়া একে ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্র্যাকশনও বলা হয় ঘুমের সমস্যা স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা করা পাইলস মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ করা পা কামড়ানো মাথা ঘুরানো হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হওয়া যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ পড়া তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়াচুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন— ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া অদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া যেমন মাটি তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে ডেলিভারির সময় একেবারেই কাছে চলে এসেছে এখন আমরা ডেলিভারি সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি শিশুর জন্মের পর পর কোন কাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেটাও তুলে ধরছি এতে আপনি ডেলিভারির পর থেকেই নতুন শিশু ও শিশুর মায়ের যত্ন নিতে পারবেনডেলিভারির পর যখন থেকে নিরাপদে সহবাস করতে পারবেনডেলিভারির পর ঠিক কবে থেকে সহবাস করা যাবে তার কোনো বাঁধাধরা নিয়ম নেই ডাক্তারের বিশেষ নিষেধাজ্ঞা না থাকলে আপনার সঙ্গী ও আপনি যখন থেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রস্তুত হবেন তখন থেকেই সহবাস করতে পারবেন অনেক ডাক্তার প্রসবের পর ৬ সপ্তাহ অপেক্ষা করতে বলেনগর্ভধারণ ও ডেলিভারি শেষে প্রত্যেক নারী ভিন্ন ধরনের অনুভূতির মধ্য দিয়ে যায় তাই সহবাসের ব্যাপারে তিনি কী ভাবছেন সেটা নিয়ে খোলাখুলি কথা বলুন এই বিষয়ে আপনাদের মধ্যে বোঝাপড়া থাকা খুব গুরুত্বপূর্ণমাসিক শুরু হওয়ার আগেই আবারও গর্ভধারণ সম্ভবশিশুর জন্মের পর শিশুর মায়ের পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগেই তিনি আবারও গর্ভধারণ করতে সক্ষম তাই পিরিয়ড হয়নি বলে এখন গর্ভধারণ করার সম্ভাবনা নেই—এটা ভেবে ভুল করবেন না মাসিক শুরু না হলে কিংবা বুকের দুধ খাওয়ালেই যে গর্ভধারণ হবে না তার কোনো নিশ্চয়তা নেই তাই প্রসবের পর প্রথম সহবাস থেকেই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করবেনবসে না থেকে শিশুর মাকে সাহায্য করুনশিশুর মা মুখ ফুটে না বললেও ঘরবাড়ি গোছানোর কাজে আপনি কিছু দায়িত্ব নিয়ে নিন তার গোছগাছের কাজকর্ম যদি আপনার কাছে জরুরি নাও মনে হয় তবুও তার কোনো সাহায্য লাগবে কি না সেটা জিজ্ঞেস করুন কীভাবে সাহায্য করলে সবচেয়ে ভালো হবে সেটা জেনে নিনতিনি হয়তো এসময়ে সবকিছু পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য নতুন নতুন আইডিয়া বের করতে পারেন যেমন জুতা একেবারেই ঘরের ভেতরে ঢোকানো যাবে না কিংবা পরনের কাপড় খুলে একটা নির্দিষ্ট জায়গায় জমা করতে হবে এমন নতুন নিয়মের সাথে আপনি পুরোপুরি একমত নাও হতে পারেন তাই বলে কথা কাটাকাটিতে জড়াবেন না বোঝাপড়ার মাধ্যমে এসব বিষয় সামলানোর চেষ্টা করুনপ্রকৃতিতে কিছুক্ষণ সময় কাটানঘরের বাইরে বেরিয়ে কিছুক্ষণ প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় কাটিয়ে আসুন পার্কে হেঁটে আসতে পারেন আশেপাশে গাছগাছালি ঘেরা লোকালয় থাকলে সেদিক থেকেও ঘুরে আসতে পারেন এতে একদিকে ভালো ব্যায়াম হবে সাথে মনেও প্রশান্তি আসবে নতুন শিশুকে স্বাগত জানাতে প্রস্তুত হোননতুন শিশুর জন্য অপেক্ষার প্রহর প্রায় শেষ হয়ে এসেছে কিছুদিনের মধ্যেই আপনার গর্ভের ছোট্টমণি পৃথিবীর আলো দেখবে যেকোনো মুহূর্তে প্রসব শুরু হতে পারে আগামী কয়েকটা সপ্তাহ হয়তো আপনাদের খুব ব্যস্ত সময় কাটবে তাই এখনই যতখানি সম্ভব প্রস্তুতি নিয়ে রাখুনএক পাশে কাত হয়ে ঘুমানএ সপ্তাহেও ঘুমানোর সময়ে আপনার সুবিধামতো ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমাবেন কারণ চিৎ হয়ে ঘুমালে শিশুর ক্ষতি হতে পারে[ ঘুমের সময়ে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক কয়েকটা বালিশ নিয়ে ঘুমাতে পারেনআয়রনফলিক এসিড ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যানবিগত সপ্তাহগুলোর মতো এ সপ্তাহেও নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট ও ক্যালসিয়াম ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যাবেন এগুলো গর্ভের শিশুর সুস্থভাবে বেড়ে ওঠায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে পাশাপাশি আপনাকে মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করতে পারে আপনার গর্ভের শিশু এখন মাথা থেকে পায়ের গোড়ালি পর্যন্ত প্রায় ৫১২ সেন্টিমিটার লম্বা—প্রায় একটি বড় কাঁঠালের সমান তার ওজন প্রায় ৩৫ কেজি হয়ে গিয়েছেশিশু প্রসবের জন্য প্রস্তুতছোট্ট সোনামণি পৃথিবীর আলো দেখার জন্য প্রস্তুত সে এখন ফুল টার্ম অর্থাৎ মায়ের গর্ভে বেড়ে ওঠার জন্য সে পর্যাপ্ত সময় পেয়েছে সে হয়তো এখন মাথা নিচের দিকে নিয়ে আপনার তলপেটের ভেতরে ঢুকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত হয়ে আছেশিশুর হাতের নখ লম্বা হচ্ছেকয়েক সপ্তাহ আগে হাতের আঙুলের নখগুলো লম্বা হয়ে আঙুলের মাথা পর্যন্ত পৌঁছে গিয়েছিল এই সপ্তাহে আঙুলের নখগুলো লম্বা হয়ে আঙুলের মাথা কিছুটা ছাড়িয়ে যাবেছোট্ট শিশু এখন বেশ নাদুসনুদুসশেষ কয়েক সপ্তাহে শিশুর শরীরে ভালো পরিমাণে চর্বি জমে—দিনে প্রায় ১৪ গ্রাম করে তাকে দেখতে এখন অনেকটা নাদুসনুদুস লাগে তার ত্বক এখন কোমল ও তুলতুলে নতুন শিশুর জন্য অপেক্ষার প্রহর প্রায় শেষ হয়ে এসেছে কিছুদিনের মধ্যেই হয়তো আপনার গর্ভের ছোট্টমণি পৃথিবীর আলো দেখবেসম্ভবত এই সপ্তাহের শেষের দিকে আপনার ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখ তবে বেশিরভাগ নারী ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখের ২ সপ্তাহ আগে কিংবা পরের সময়টুকুতে সন্তান জন্মদান করেন অর্থাৎ আপনার শিশু যেকোনো মুহূর্তে জন্মগ্রহণ করতে পারেকৃত্রিমভাবে প্রসব শুরু করানোপ্রসব হতে বেশি দেরি হলে ডাক্তার আপনাকে কৃত্রিমভাবে প্রসব শুরু করানোর পরামর্শ দিতে পারেন নির্দিষ্ট ওষুধ বা ওষুধ ছাড়া বিশেষ কিছু পদ্ধতির মাধ্যমে কৃত্রিমভাবে প্রসব শুরু করানোর চেষ্টা করা হতে পারেমেমব্রেন সুইপপ্রসবে দেরি হলে ডাক্তার বিশেষ একটা পদ্ধতিতে জরায়ুমুখে আঙ্গুল ঢুকিয়ে প্রসব শুরু করার ব্যবস্থা করতে পারেন এই পদ্ধতিকে ডাক্তারি ভাষায় মেমব্রেন সুইপ বলা হয়গর্ভের শিশুকে ঘিরে থাকা থলের মতো পর্দাগুলোকে জরায়ুমুখ থেকে আলাদা করা হয় এতে করে প্রসবের জন্য সহায়ক বিশেষ হরমোন নিঃসৃত হয়গর্ভধারণের ৪০ সপ্তাহ পর এই পদ্ধতি ব্যবহার করলে প্রাকৃতিকভাবে প্রসব শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দ্বিগুণ বেড়ে যায় তবে এই পদ্ধতিতে কিছুটা অস্বস্তি হতে পারেগর্ভকালীন চেকআপশেষের এই সময়টায় আপনার ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে শিডিউল অনুযায়ী চেকআপে যাওয়া জরুরিসাধারণত এই পর্যায়ে প্রতি সপ্তাহে চেকআপে যেতে বলা হয় আপনারও এমন শিডিউল হলে এই সপ্তাহে চেকআপ করানোর ব্যবস্থা করে ফেলুনঅন্যান্য লক্ষণএ সপ্তাহে আপনার আরও যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে সেগুলো হলো— পেট টানটান বা শক্ত হওয়া একে ব্র্যাক্সটন হিক্স কন্ট্র্যাকশনও বলা হয় ঘুমের সমস্ স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ দাঁতের মাড়ি ফুলে যাওয়া এবং মাড়ি থেকে রক্ত পড়া পেটের আকার বাড়ার সাথে সাথে পেটের চারপাশের পেশিতে ব্যথা ক পাই মাথা ব্যথা কোমর ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা কোষ্ঠকাঠিন্য বদহজম ও বুক জ্বালাপোড়া করা অল্পতেই গরম লাগা কিংবা সামান্য গরম আবহাওয়াতেই অস্বস্তি বোধ ক পা কামড়ানো মাথা ঘুরা হাত–পায়ে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন হও যোনিপথে ইনফেকশন হওয়া মুখে মেছতার মতো বাদামি ও ছোপ ছোপ দাগ প তৈলাক্ত ত্বক ও ত্বকে দাগ পড়া চুল ঘন ও ঝলমলে হওয়াএ ছাড়াও এই সপ্তাহে আপনার প্রথম দিকের সময়ের লক্ষণগুলো থাকতে পারে যেমন—ঘন ঘন মনমেজাজ বদলানো বা মুড সুইং এই খুশি আবার এই মন খারাপ—এমনটা হতে পারে পাশাপাশি এসময়ে ছোটোখাটো বিষয়ে মন খারাপ লাগা অথবা কান্না করে ফেলার প্রবণতা দেখা দিতে পারেবমি বমি ভাব ও বমি হওয়াঅদ্ভুত জিনিস খাওয়ার ইচ্ছা হওয়া যেমন মাটি তীব্র ঘ্রাণশক্তি স্তনে ব্যথা স্তন থেকে তরল নিঃসৃত হওয়া সাদাস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয যোনিপথ দিয়ে হালকা রক্তপাত হওয়া এমন হলে অবশ্যই একজন ডাক্তার দেখাবেন কারণ এটা মারাত্মক জটিলতার লক্ষণ হতে পারে ডেলিভারির সময় একেবারেই কাছে চলে এসেছে এখন আমরা ডেলিভারি সংক্রান্ত তথ্যের পাশাপাশি শিশুর জন্মের পর পর কোন কাজগুলো গুরুত্বপূর্ণ সেটাও তুলে ধরছি এতে আপনি ডেলিভারির পর থেকেই নতুন শিশু ও শিশুর মায়ের যত্ন নিতে পারবেনন্যাপি বা ডায়াপার পাল্টানো শিখে রাখুনশিশু ন্যাপি বা ডায়াপার ভেজালে তা কীভাবে পালটাবেন তা শিখে রাখুন আপনার আপনজন ও বন্ধুদের মধ্যে কারও এই বিষয়ে অভিজ্ঞতা থাকলে তাদের কাছ থেকে টিপসগুলো জেনে নিন আপনার মাথায় এই সংক্রান্ত কোনো প্রশ্ন থাকলে তারা হয়তো সেটারও উত্তর দিতে পারবেন ন্যাপি পাল্টানোর সময়ে শিশুর সাথে কিছুক্ষণ একান্তে সময় কাটানোও হয়ে যাবেনিজেদের জন্য সময় নিনগত ৯ মাস ধরে হয়তো আপনাদের সব চিন্তাভাবনার কেন্দ্রবিন্দু ছিল আপনাদের অনাগত সন্তান গর্ভাবস্থার একেবারে শেষের এসময়ে এসে নাহয় নিজের ও শিশুর মায়ের দিকে একটু মনোযোগ দিন একসাথে একটু রিল্যাক্স করুনদুজনেই উপভোগ করেন এমন একটা কাজ বেছে নিতে পারেন এতে ডেলিভারির জন্য একটানা অপেক্ষা করা থেকে বিরতি পাবেন পাশাপাশি পরিবারে নতুন সদস্য যোগ হওয়ার আগে শেষবারের মতো একান্তে কিছু সময় কাটাতে পারবেননতুন শিশুকে নিয়ে বাড়ি ফেরার মানসিক প্রস্তুতি নিনহাসপাতাল থেকে আপনার সোনামণি ও শিশুর মাকে নিয়ে বাড়ি ফেরার পর কীভাবে তাদের দেখভাল করবেন তা নিয়ে আপনার মনে অনেক ধরনের প্রশ্ন থাকতে পারে শিশুর মা পরিবারের অন্যান্য সদস্য এবং ডাক্তারের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা করতে পারেনদুজনে মিলে শিশুর যত্নের কাজগুলো শেয়ার করতে পারেন শিশুর মা যখন শিশুকে দুধ খাওয়াবেন তখন তাকে একটা গ্লাসে পানি এনে দিন শিশুর পরনের ন্যাপি বা ডায়াপার বদলে দিন তাকে খাওয়ানোর পর কীভাবে ঢেঁকুর তোলাবেন কান্না কীভাবে থামাবেন কীভাবে ঘুম পাড়াবেন—এসব এখনই শিখে রাখুনশিশুর যত্ন নেওয়ার জন্য দোকান থেকে হয়তো অনেক কিছু কিনতে হবে সেগুলোর একটা তালিকা তৈরি করে শিশুর মাকে দেখান তার মাথায় আরও কোনো কিছু কেনার থাকলে সেটা লিস্টে যোগ করে কেনাকাটা করে ফেলুনআগামী দিনগুলোতে আপনারা ধীরে ধীরে আপনাদের ছোট্টমণি ও তার দেখাশোনা সম্পর্কে খুঁটিনাটি অনেক কিছু শিখে যাবেন তাই তাড়াহুড়া না করে দুজনে মিলে ধৈর্য ধরে এই যাত্রায় এগিয়ে যান মন খুলে নিজেদের অনুভূতিগুলো ভাগাভাগি করে নিলে আপনাদের মধ্যে বোঝাপড়া বাড়ানো সহজ হতে পারে দ্রুত ওজন কমানোর পর অধিকাংশ মানুষের পক্ষেই তা ধরে রাখা সম্ভব হয় না স্থায়ীভাবে ওজন কমানোর সবচেয়ে কার্যকর পদ্ধতি হলো স্বাস্থ্যকর অভ্যাস তৈরি করার মাধ্যমে পর্যায়ক্রমে ওজন নিয়ন্ত্রণে আনা আর এজন্য সর্বপ্রথম ধাপ হচ্ছে স্বাস্থ্যকর খাবারগুলো চিনে নেয়া এবং সেই অনুযায়ী দৈনন্দিন খাদ্যাভ্যাস গড়ে তোলাএকই ধরণের স্বাস্থ্যকর খাবার সবার পছন্দ নয় খেয়ে তৃপ্তি আসে না এমন খাবার খেয়ে খুব দ্রুত ওজন কমানো গেলেও অধিকাংশ ক্ষেত্রে তা আর ধরে রাখা সম্ভব হয় না তাই আগামী কয়েক সপ্তাহে আমরা আপনাকে সাহায্য করবো এমন সব খাবার খুঁজে পেতে যা স্বাস্থ্যকর এবং আপনার রুচির সাথে মানানসই এতে আপনার দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস গড়ে উঠবে পাশাপাশি কষ্ট করে কমানো ওজন ও মেদ যেন আবার ফিরে না আসে সেটিও নিশ্চিত করা যাবে আগামী ১২ সপ্তাহের অগ্রগতি বুঝার জন্য প্রতি সপ্তাহের শুরুতে আপনার ওজন ও কোমরের মাপের একটি রেকর্ড রাখুন প্রতি সপ্তাহের পরিবর্তন আপনাকে পরবর্তী সপ্তাহগুলোতেও কার্যক্রমগুলো ধরে রাখার অনুপ্রেরণা যোগাবেছোট আকারের প্লেট ও বাটি ব্যবহার করুন এতে অতিরিক্ত খাবার আঁটানোর সুযোগ থাকবে না ফলে সঠিক পরিমাণে খাওয়া হবে আপনিও খেয়ে তৃপ্তি পাবেন অতিরিক্ত খাওয়ার কারণে অস্বস্তি হবেনাপ্রতিবেলায় খাবার খাওয়ার আগে ৫০০ মিলিলিটার বা দুই গ্লাস পানি খেয়ে নিবেন এটি আপনার পেট ভরাতে সাহায্য করে গবেষণায় দেখা গেছে এই সহজ অভ্যাসটি আপনার ওজন কমাতে বেশ কার্যকরলিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করুন এটি আপনাকে সামনের সপ্তাহগুলোর ব্যায়ামের জন্য প্রস্তুত করবে সকালের নাস্তাআমরা এখানে কয়েক ধরণের নাস্তা উল্লেখ করছি আপনার যেটা ভালো লাগে সেটাই খেতে পারবেন তবে শুধু খেয়াল রাখবেন নাস্তায় যেসব খাবার খাচ্ছেন সেগুলোর ক্যালরির যোগফল যেন নারীদের ক্ষেত্রে ২৮০ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৩৮০ এর বেশি না হয় সকালের নাস্তায় খেতে পারেন এমন কিছু খাবার নিচে তুলে ধরা হলো—খাবার ক্যালরির পরিমাণ ১টি মাঝারি কলা প্রায় ৮০ ক্যালরি ১টি সেদ্ধ ডিম প্রায় ৮০ ক্যালরি ১টি বড় খেজুর প্রায় ৭০ ক্যাল আধা কাপ দুধ প্রায় ৮০ ক্যালরি তেল ছাড়া আটার বা লাল আটার রুটি (৬ ইঞ্চি আকারের) প্রায় ৯০ ক্যাল ১টি মাল্টা প্রায় ৮০ ক্যালরি ১টি মাঝারি আপেল প্রায় ১০০ ক্যাল ১ স্লাইস আটার (লাল আটা হলে ভাল) তৈরি বা হোলগ্রেইন পাউরুটি (৫০ গ্রাম) প্রায় ১০০ ক্যালরিআধা কাপ শুকনো ওটস ১৫০ ক্যালরিএক চা চামচ তেল দিয়ে রান্না করা আধা কাপ সবজি প্রায় ৯০ ক্যালরিএ খাবারগুলো যেভাবে খাওয়া যেতে পারে—কলা দুধ দিয়ে রান্না করা ১/২ কাপ ওটসরুটি সবজি ডিম আপেলডিম মাল্টা দুধ দিয়ে রান্না করা ১/৪ কাপ ওটস খেজুর ইত্যাদিআমরা যে তালিকা দিয়েছি সেভাবেই যে খেতে হবে তা নয় আপনি নিজের পছন্দমত খাবার খেতে পারবেন তবে অতিরিক্ত ক্যালরি যেহেতু ওজন বাড়ার ক্ষেত্রে দৃশ্যমান ভূমিকা রাখে তাই কত ক্যালরি খাচ্ছেন সে ব্যাপারটা মাথায় রাখবেন দুপুরের খাবারদুপুরের খাবার খাওয়ার সময় মনে মনে আপনার প্লেটকে চারটি সমান ভাগে ভাগ করে ফেলুন এবার প্লেটের চারভাগের দুইভাগ ভরে নিবেন শাকসবজি ও ফলমূল দিয়ে বাকি দুইভাগের একভাগে থাকবে শস্যদানা বা শ্বেতসারজাতীয় খাবার আরেকভাগে থাকবে প্রোটিন বা আমিষজাতীয় খাবারআমরা এখানে বিভিন্ন ধরণের খাবারের কথা উল্লেখ করছি এগুলো থেকে আপনার পছন্দমত খাবার বেছে নিন সপ্তাহের একেকদিন একেক ধরনের খাবার খেয়ে দেখতে পারেন দুপুরের খাবার খাওয়ার সময় খেয়াল রাখবেন যা খাচ্ছেন তার ক্যালরির যোগফল যেন নারীদের ক্ষেত্রে ৪২০ এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে ৫৭০ এর বেশি না হয় শাকসবজিশাকসবজিতে ক্যালরির পরিমাণ খুবই কম তাই এগুলো প্রচুর পরিমাণে খাওয়া যাবে এগুলোতে অনেক আঁশ বা ফাইবার থাকে তাই পেট সহজে ভরে উঠবে এবং অনেকক্ষণ ক্ষুধা লাগবে না শাকসবজি খাওয়ার সুবিধা হল আপনি এগুলো কাঁচা কিংবা সেদ্ধ ভাজি কিংবা তরকারি – যেকোনোভাবে খেতে পারেন চেষ্টা করবেন বিভিন্ন ধরনের টাটকা মৌসুমি শাকসবজি খেতে এতে খরচ কম পড়বে আবার শরীর নানা ধরনের পুষ্টি উপাদান সহজেই পেয়ে যাবেতবে রান্না করার সময় অবশ্যই কতটুকু তেল ব্যবহার করছেন তা মাথায় রাখবেন সামান্য এক টেবিল চামচ অলিভ অয়েলে প্রায় ১২০ ক্যালরি থাকে যা দুটি আস্ত মাল্টা কিংবা প্রায় আধা কেজি বরবটিতে থাকা ক্যালরির সমান তাই সবজি রান্না করার সময় তেললবণ ইত্যাদি যতটুকু ব্যবহার না করলেই নয় ঠিক ততটুকুই ব্যবহার করবেন বাহারি রঙের শাকসবজি খাবেনমনে রাখবেন আলু সবজির মধ্যে পড়বে না আলুর পাশাপাশি কাঁচকলা মাটির নিচের আলু কাসাভা ইত্যাদিও শাকসবজির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হবে না এগুলোকে ভাতরুটির মত শ্বেতসারজাতীয় খাবারের মধ্যে ধরা হয়ভাত রুটি ও অন্যান্য শ্বেতসারজাতীয় খাবারঅনেকে ধারণা করেন যে ওজন কমাতে হলে ভাতরুটি খাওয়া একেবারে ছেড়ে দিতে হবে — এই ধারণাটি ভুল পরিমিত পরিমাণে যদি তুলনামূলকভাবে পুষ্টিকর ও কম ক্যালরির শ্বেতসারগুলো খাওয়া যায় তাহলে সেগুলো পেট দীর্ঘক্ষণ ভরা রাখতে এবং ওজন কমাতে সহায়তা করবেসাদা চাল ও ময়দার বদলে বেছে নিন লাল চাল বা লাল আটার রুটি এগুলোতে সাধারণ চাল বা আটার তুলনায় পুষ্টি উপাদানের পরিমাণ অনেক বেশি এছাড়া এগুলোতে প্রচুর পরিমাণে আঁশ বা ফাইবার থাকে যা পেট ভরা রাখতে সাহায্য করেআজ থেকেই যদি মনে হয় যে আপনি খাদ্যাভ্যাসে একটা পরিবর্তন আনবেন মেশিনে ভাঙ্গানো রিফাইন্ড গ্রেইনের বদলে হোলগ্রেইন বা গোটা শস্যদানা বেশী খাবেন তাহলে আপনার জন্য ৩টি পরামর্শ—আস্তে আস্তে শুরু করবেন প্রথমে নতুন কিছু খেলে সেটার স্বাদ ভালো নাই লাগতে পারে একেবারে পুরোটা না বদলে অল্প অল্প করে বদলাতে পারেন সাদা ভাতের সাথে কিছু লাল চালের ভাত মিশিয়ে খেতে পারেন রুটি খেলে একটা সাদা আটার রুটি তার সাথে একটা লাল আটার রুটি খেতে পারেন ধীরে ধীরে আপনি হয়তো সেই স্বাদে অভ্যস্ত হয়ে যাবেনভাতরুটি ছাড়াও অন্যান্য হোলগ্রেইন খেতে পারেন যেমন পাস্তা খেতে চাইলে প্যাকেটে হোলগ্রেইন লেখা দেখে পাস্তা কিনতে পারেনলাল আটা আর লাল চাল খেলেই যে পরিমাণে বেশী খাওয়া যাবে তা কিন্তু না সুষম খাবারের অংশ হিসেবে আপনি লাল চাল আর লাল আটা খাবেন পুরো প্লেট ভাত নিয়ে অল্প একটু তরকারি দিয়ে না খেয়ে চেষ্টা করবেন প্রতি বেলায় প্লেটের অর্ধেক শাকসবজি ফলমূল দিয়ে ভরতেপ্রোটিন বা আমিষজাতীয় খাবারপ্রোটিন বা আমিষজাতীয় খাবার লম্বা সময় ধরে পেট ভরা রাখতে সাহায্য করে প্রোটিনজাতীয় খাবার বেছে নেওয়ার সময় কম চর্বিযুক্ত খাবারগুলো বেছে নিন প্লেটের চারভাগের একভাগ ভরবেন এসব খাবার দিয়ে এরকম কিছু খাবার হলো—মটরশুঁটি শিম ও অন্যান্য বীনসবিভিন্ন ধরনের ডাল যেমন মসুর মুগ মটর ছোলা বা মাষকলাই মাছ চর্বিছাড়া মাংস চামড়া ছাড়ানো মুরগির মা লোফ্যাট দুধ দই পনির ও অন্যান্য দুগ্ধজাত খাবার ডিম টোফুরাতের খাবাররাতের খাবারের ক্ষেত্রে পরিমাণটা ঠিক দুপুরের খাবারের মতই হবে তবে দুপুরে প্রাণিজ প্রোটিন খেলে রাতে চেষ্টা করুন উদ্ভিজ্জ প্রোটিন খেতে এতে আপনার বিভিন্ন ধরনের পুষ্টি উপাদান প্রাপ্তি নিশ্চিত হবে তাছাড়া সবজি কম খেতে ইচ্ছে করলে বা মিষ্টি কিছু খেতে ইচ্ছে করলে একটি ফল খেয়ে নিতে পারেন বেশি ফ্যাট বা চর্বিযুক্ত খাবার অলিভ অয়েল অন্যান্য তেল ঘি কিংবা বাটার – এগুলো সবই চর্বিবহুল উপকরণ আর চর্বিবহুল মানেই ক্যালরিবহুল স্বাভাবিকভাবেই ভাজাপোড়া চিপস কেকপেস্ট্রি পরোটা পোলাওবিরিয়ানি ইত্যাদিকে আমরা ক্যালোরিবহুল খাবার হিসেবে ধরি তবে বাড়িতে রান্না করার সময় যদি তরকারি বা শাকসবজিতে ব্যবহৃত তেলের পরিমাণ মাথায় না রাখা হয় তাহলে সেসব স্বাস্থ্যকর খাবারও চর্বি ও ক্যালরিবহুল হয়ে যাবে এ ব্যাপারে বিশেষভাবে সচেতন থাকতে হবেনাস্তায় দোকানের জেলি চিনিযুক্ত ব্রেকফাস্ট সিরিয়াল (কর্ণ ফ্লেক্স ফ্রুট লুপস চকোজ ইত্যাদি) খাবার তালিকা থেকে বাদ দিনদোকানের প্রসেসড খাবার বা রেস্টুরেন্টের খাবারগুলো সুস্বাদু করার জন্য এগুলোতে প্রচুর ফ্যাট লবণ ও চিনি ব্যবহার করা হয় ওজন কমাতে চাইলে এগুলো এড়িয়ে চলতে হবেলিকুইড ক্যালরি থেকে সাবধান থাকতে হবে দোকানের জুস কোক বা অন্যান্য কোমল পানীয় স্মুদি কোল্ড কফি মিল্কশেক ইত্যাদিতে প্রচুর ক্যালরি থাকে অনেকসময় পুরো একবেলার খাবারের সমান ক্যালরি থাকে এক গ্লাস মিল্কশেকে যা শেষ করতে হয়তো পাঁচ মিনিট সময়ও লাগে না তাই ওজন কমাতে চাইলে এগুলো পরিহার করাই ভালোচাকফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে তাতে অতিরিক্ত চিনি মিশিয়ে খাওয়ার অভ্যাস বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুনএই সপ্তাহের কাজগুলো শেষ হলে আপনি ওজন কমানোর ২য় সপ্তাহের কার্যক্রম শুরু করতে পারেন আঁশ বা ফাইবারযুক্ত খাবারের যত উপকারখাওয়ার সময় পর্যাপ্ত পরিমাণে ফাইবারযুক্ত খাবার খেলে পেট অনেকক্ষণ ভরা থাকবে এভাবে আপনি ক্যালরি গ্রহণের মাত্রা আপনার দৈনিক ক্যালরিসীমার মধ্যেই সীমিত রাখতে পারবেন আঁশযুক্ত খাবার আপনার পেটকে ভালো রাখে কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করে আর কোলেস্টেরলের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে আমাদের প্রত্যেকের দৈনিক ৩০ গ্রাম করে ফাইবার খাওয়া উচিত কিন্তু বাস্তবে বেশিরভাগ মানুষেরই প্রতিদিন এর চেয়ে অনেক কম ফাইবার খাওয়া হয় গবেষণায় দেখা গেছে নতুন কোনো অভ্যাস তৈরি করতে গড়ে ১২ সপ্তাহ সময় লাগে আমাদের এই গাইডটি আপনাকে প্রতিদিনের ক্যালরি নিয়ন্ত্রণে রাখার মাধ্যমে ওজন কমাতে এবং কমিয়ে ফেলা ওজন স্থিতিশীল রাখতে সাহায্য করবে এভাবে আপনি সপ্তাহে ০৫ থেকে ১ কেজি (১ থেকে ২ পাউন্ড) করে ওজন কমাতে পারবেন এই হারে ওজন কমানো সবচেয়ে নিরাপদ স্থিতিশীল ও কার্যকরখুব অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত ওজন কমাতে চেষ্টা করলে গুরুত্বপূর্ণ নানা পুষ্টি উপাদানের অভাব পিত্তথলিতে পাথর হওয়া সহ বিভিন্ন ধরনের স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি হতে পারে ওজন কমানোর ২য় সপ্তাহে পৌঁছাতে পারায় আপনাকে অভিনন্দন সামনের সপ্তাহগুলোতেও ওজন কমানোর ১ম সপ্তাহের উপদেশ অনুযায়ী স্বাস্থ্যকর খাবারের অভ্যাস গড়ে তোলা চালিয়ে যেতে হবে এই সপ্তাহ থেকে খাবারের পাশাপাশি শারীরিক পরিশ্রম এবং ব্যায়ামের দিকেও মনোযোগ দিতে হবে এই দুইয়ের ভারসাম্য আপনার ওজন কমিয়ে আনতে সহায়তা করবেআপনি প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু না করে থাকলে ১২ সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায় এর প্রথম সপ্তাহের কার্যক্রম দেখুন এখন থেকে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট করে ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুন আপনার যদি একেবারেই শারীরিক পরিশ্রম করার অভ্যাস না থাকে তাহলে আস্তে আস্তে প্রতিদিনের ব্যায়ামের পরিমাণ বাড়ান এভাবে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে সাপ্তাহিক ১৫০ মিনিটের লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব হবে২ সপ্তাহের সাতদিনের মধ্যে কোন দিনগুলোতে ব্যায়াম করবেন দিনের কোন সময়ে কোন ধরনের ব্যায়াম করবেন বাড়িতে ব্যায়াম করবেন নাকি পার্কে বা জিমে গিয়ে ব্যায়াম করবেন — এগুলো আগেভাগেই ঠিক করে রাখুন যদি বিশেষ জুতা ম্যাট বা অন্যান্য সামগ্রী প্রয়োজন হয় তাহলে সেগুলো আগেই জোগাড় করে রাখুন তাহলে ব্যায়াম না করার জন্য অজুহাত দেওয়ার উপায় থাকবে না৩ ব্যায়ামের পরে ২ গ্লাস পানি পান করে ফেলুন এতে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া পানির অভাব পূরণ হবে অন্যদিকে ক্ষুধা নিবারণ হবে ফলে ব্যায়ামের পরপর বেশি খাবার খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা কমে যাবে৪ খাবার তৈরি করার সময় ভেজে খাওয়ার বদলে সেদ্ধ ভাপে সেদ্ধ গ্রিল বা পানিতে পোঁচ করে খাওয়ার অভ্যাস করুন ডিম মাছ মাংস বা সবজি — সবই এভাবে খাওয়া যাবে ভেজে খাওয়া খাবারে প্রচুর পরিমাণে তেল ব্যবহৃত হয় যা অত্যন্ত ক্যালরিবহুল অন্যদিকে গ্রিল স্টিম বা সেদ্ধ করে খাওয়ার প্রক্রিয়ায় তেলের অতিরিক্ত ক্যালরি যুক্ত হয় না যেসকল ব্যায়াম ও শারীরিক কসরতের মাধ্যমে ওজন কমানো যেতে পারে তার কয়েকটি হচ্ছে— হাঁটা সাইকেল চালানো বাগান করা সাঁতার নাচ ব্যাডমিন্টন ফুটবল ইত্যাদি খেলাধুলা ভারোত্তোলন ইয়োগা বা যোগব্যায়াম এবং অন্যান্য স্ট্রেচিং এক্সারসাইজ জিমে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করাআপনার কোনো শারীরিক অসুস্থতা থাকলে কিংবা আগে থেকে হাতপা হাঁটু মেরুদণ্ড বা কোমরে আঘাত অথবা কোনো সমস্যার ইতিহাস থাকলে ব্যায়ামের পরিকল্পনা করার সময় ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গেছে যারা স্বাস্থ্যসম্মত ডায়েট মেনে চলার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করেন তারা ওজন কমাতে বেশি সফল হন কমানো ওজন ফেরত আসা প্রতিরোধ করতেও এই দুইয়ের সমন্বয় অধিক কার্যকরতবে অনেকেরই ব্যায়াম করার অভ্যাস থাকে না তাই নতুন করে ব্যায়াম শুরু করাটা চ্যালেঞ্জিং হতে পারে ধীরে ধীরে দৈনিক পরিশ্রমের মাত্রা বাড়াতে হবে প্রতিদিনের রুটিনে একটু একটু করে শারীরিক পরিশ্রম অন্তর্ভুক্ত করা যায় এর উদাহরণ হতে পারে লিফটের বদলে সিঁড়ির ব্যবহার কম দূরত্বের পথ রিক্সায় চড়ার বদলে হেঁটে অতিক্রম করা বাসে যাতায়াত করলে এক স্টপ আগে নেমে বাকি পথ হেঁটে যাওয়া ইত্যাদি এভাবে কিছুটা অভ্যাস হয়ে গেলে নিয়ম করে ব্যায়াম শুরু করা যায় এক্ষেত্রে সাপ্তাহিক লক্ষ্য হলো কমপক্ষে ১৫০ মিনিট মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম করামাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম বলতে কী বোঝায়মাঝারি তীব্রতার শারীরিক কর্মকাণ্ডের সময় হৃৎস্পন্দন বা হার্টবিট বেড়ে যায় একই সাথে শ্বাসপ্রশ্বাস দ্রুততর হয় এবং শরীর গরম হয়ে ওঠে নিজে নিজে ব্যায়াম করার সময় মাঝারি তীব্রতায় পৌঁছেছেন কি না তা বোঝার একটা উপায় হলো এরকম ব্যায়ামের সময় কথা বলা যাবে কিন্তু গান গাওয়া সম্ভব হবে নামাঝারি তীব্রতার ব্যায়ামের উদাহরণের মধ্যে রয়েছে দ্রুত হাঁটা সাঁতার কাটা এবং সাইকেল চালানো এছাড়া নতুন করে যারা শারীরিক পরিশ্রম শুরু করছেন তাদের জন্য নিচের দুটি পদ্ধতি বেশ কার্যকর১ নির্দিষ্ট নিয়মমাফিক দৌড়ানো যেতে পারে দৌড়ানোর জন্য আমাদের ৯ সপ্তাহে দৌড়ানোর অভ্যাস তৈরি করার উপায় অনুসরণ করতে পারেন এই গাইডে জীবনে কখনও দৌড়ায় নি এমন পূর্ণবয়স্ক মানুষ কীভাবে নয় সপ্তাহের মধ্যে পাঁচ কিলোমিটার দৌড়ানোর অভ্যাস করতে পারেন তা সহজে তুলে ধরা হয়েছে ২ বাড়িতে বসে কোন আলাদা যন্ত্রের সাহায্য ছাড়াই ফ্রি হ্যান্ড ব্যায়াম করতে পারেন ইউটিউব বা গুগলে নিচের শব্দগুলো লিখে খুঁজলেই এ জাতীয় ব্যায়ামের নির্দেশনাযুক্ত অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন এমন কিছু শব্দ হলো—PushupPullupPlankSquatতবে যে পদ্ধতিই বেছে নেওয়া হোক তা যেন উপভোগ করার মত হয় উপভোগ্য না হলে এগুলো দীর্ঘমেয়াদি অভ্যাসে পরিণত করা সম্ভব হবে না ব্যায়ামের সবগুলো অপশনের মধ্যে যেগুলো ব্যক্তিগতভাবে পছন্দ হয় সেগুলো ঘুরেফিরে করা যেতে পারে এতে একঘেয়েমি আসবে নানতুন করে ব্যায়াম করা শুরু করলে বা শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে ক্ষুধা কিছুটা বেড়ে যেতে পারে এমনটা হওয়া স্বাভাবিক এতে চিন্তার কিছু নেই ব্যায়ামের কারণে শরীর স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি ক্যালরি খরচ করে তাই সেই ঘাটতি পূরণ করতে হবেতবে বিশেষভাবে সতর্ক থাকতে হবে যেন ব্যায়ামের পর ক্যালরিবহুল খাবার (চিনি দেওয়া জুসশরবত মিল্কশেক ভাজাপোড়া কেকবিস্কুট ইত্যাদি) খাওয়া না হয় এগুলো খেলে ওজন কমার বদলে উল্টো বেড়ে যেতে পারে তাই ক্যালরির পরিমাণ কম থাকলেও সহজে পেট ভরায় এমন খাবার বেছে নিতে হবে এসব খাবারের উদাহরণ হলো ফল (যেমন আপেল বা কলা) টক দই সেদ্ধ ডিম সামান্য টক দই দিয়ে লাল আটার তৈরি একটি ছোট রুটি ইত্যাদিযেভাবে দৈনন্দিন জীবনে ব্যায়াম অন্তর্ভুক্ত করতে পারেনশারীরিক পরিশ্রমের মাধ্যমে ক্যালরি খরচ হয় আর যথেষ্ট পরিমাণ ক্যালরি খরচ করার মাধ্যমে ওজন কমিয়ে আনা যায় কীভাবে দৈনিক শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ বাড়িয়ে সহজেই ওজন কমানো যায় তা নিয়ে ৯টি টিপস নিচে তুলে ধরা হলো—১) আরও হাঁটুন শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ বাড়ানোর সবচেয়ে সহজ এবং কার্যকর উপায়গুলোর মধ্যে একটি হলো হাঁটা হাঁটাহাঁটিকে নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করতে হবে এজন্য কোন গ্রুপের সাথে মিলে হাঁটতে পারেন কোন সঙ্গীকে নিয়ে হাঁটলে তা যেমন উপভোগ্য হবে তেমনি একজন আরেকজনকে নিয়মিত হাঁটার অনুপ্রেরণা দিতে পারবেন বাড়িতে ছাদে বা বাইরে ফুটপাথ বা মাঠে একা একা গান শুনতে শুনতে হাঁটতে পারেন২) সিঁড়ি ব্যবহার করুন লিফট ব্যবহার না করে সিঁড়ি দিয়ে উঠানামা করুন বিল্ডিং অনেক লম্বা হলে গন্তব্যের কয়েক তলা আগে নেমে পড়ে সিঁড়ি দিয়ে বাকিটুকু অতিক্রম করা যায়৩) দৌড়ানো শুরু করুন দৌড়ানোর জন্যও কোন সঙ্গীকে নিয়ে দৌড়ানো যেতে পারে সঙ্গী একাধিক হলে প্রতিযোগিতা করে দৌড়ানো যায় এক্ষেত্রে কাউচ টু ফাইভ কে প্রোগ্রামটি অনুসরণ করে আগামী নয় সপ্তাহের মধ্যে একটানা পাঁচ কিলোমিটার দৌড়ানোর অভ্যাস করতে পারবেন৪) পার্কে বা ছাদে ব্যায়াম করুন খালি হাতে বা ব্যায়াম করার উপকরণসহ কোনো পার্কে গিয়ে এমনকি বাসার ছাদেও ব্যায়াম করতে পারেন পরিবেশে পরিবর্তন এলে পুরো প্রক্রিয়ায় নতুন করে আগ্রহ বাড়তে পারে৫) যাতায়াতের মাঝেও ব্যায়াম করুন বাসে বা গনপরিবহনে যাতায়াত করলে এক স্টপ আগে নেমে বাকি পথ হেঁটে যাওয়া যায় কম দূরত্বের পথ রিক্সায় চড়ার বদলে হেঁটে অতিক্রম করুন সাইকেল চালিয়ে যাতায়াত করলে সাপ্তাহিক ব্যায়ামের লক্ষ্যের সিংহভাগই পূরণ করা সম্ভব৬) গাড়ি পার্কিংএ কৌশলী হোন গাড়ি ব্যবহার করে যাতায়াতে অভ্যস্ত হলে গাড়ি পার্ক করার সময় খানিকটা দূরে পার্ক করা যেতে পারে এভাবে বাকি রাস্তা হেঁটে অতিক্রম করার সুযোগ ও অভ্যাস তৈরি হবে৭) অফিসেও ব্যায়াম করুন অফিসে যদি বসে কাজ করতে হয় তাহলে ১ ঘণ্টা পরপর কাজের রুম বা ফ্লোরের চারিদিকে কয়েকবার ঘুরে আসুন কাছাকাছি করিডোর থাকলে সেখানে কয়েক মিনিট হেঁটে আসা যায় ৫০০ মিলি বা ১ লিটারের পানিসহ বোতল ডাম্বেল হিসেবে ব্যবহার করে হাত ও শরীরের উপরের অংশের ব্যায়ামও করা যেতে পারে এছাড়া লাঞ্চের বিরতির সময়ও কিছুক্ষণ হেঁটে বা ব্যায়াম করে এরপর খাবার খেতে পারেন৮) পরিবারকে অন্তর্ভুক্ত করুন পরিবারের সবাইকে নিয়ে স্বাস্থ্যসম্মত জীবনযাপনের অভ্যাস করলে তা অধিক উপভোগ্য হয় একে অপরকে নিয়মিত শরীরচর্চা করার জন্য উৎসাহ দেওয়া যায় নিয়মিত ব্যায়াম করছেন কি না সে ব্যাপারে জবাবদিহিতার জন্য পরিবারের একজন সদস্যকে দায়িত্ব দিন এটি মেনে চললে ব্যায়াম করা ছেড়ে দেওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে সবাই একসাথে সাঁতার কাটতে পারেন পার্কে যেতে পারেন বা বাগান করতে পারেন শিশুদেরকেও এভাবে ব্যায়ামের অভ্যাস করানো যায়৯) বাগান করুন বাড়ির পাশে জায়গা থাকলে সেখানে বাগান করুন বাগানের কাজে বেশ ক্যালরি খরচ হয় জায়গা না থাকলে ছাদে কিংবা বাড়ির বারান্দায় টবে গাছ লাগিয়ে সেগুলোর যত্ন নিতে পারেনএই সপ্তাহের কাজগুলো শেষ হলে আপনি ওজন কমানোর ৩য় সপ্তাহের কার্যক্রম শুরু করতে পারেন ব্যায়ামের বহুমুখী উপকারিতাঃশারীরিক পরিশ্রম করা হয়ে ওঠে না এমন ব্যক্তিদের জন্য ব্যায়ামের অপ্রত্যাশিত উপকারিতা রয়েছে নতুন করে ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলার ফলে আত্মবিশ্বাস বাড়ে আত্মমর্যাদাবোধ উন্নত হয় এই সাফল্য আপনাকে মানসিকভাবে চাঙ্গা করবে এবং ওজন কমানো সহ জীবনের অন্যান্য ক্ষেত্রে সাফল্য আনার প্রেরণা যোগাবে এভাবে ব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরের যত্নের পাশাপাশি মানসিক স্বাস্থ্যের উন্নতি ঘটে পেডোমিটারের ব্যবহারঃস্মার্টফোন এবং স্মার্টওয়াচ ব্যবহারকারীরা পেডোমিটার ব্যবহার করতে পারেন এটি অ্যাপ হিসেবে ডাউনলোড করা যায় আবার স্বতন্ত্র যন্ত্র হিসেবেও পাওয়া যায় পেডোমিটারের মাধ্যমে প্রতিদিন কী পরিমাণ হাঁটা বা শারীরিক পরিশ্রম হচ্ছে তার একটি হিসাব পাওয়া যায় গড় হিসাব বের করে শারীরিক পরিশ্রমের পরিমাণ ক্রমান্বয়ে বাড়িয়ে প্রতিদিনের শরীরচর্চার লক্ষ্য নির্ধারণ করা যায় ওজন কমানোর তৃতীয় সপ্তাহে পদার্পণ করায় আপনাকে অভিনন্দনস্বাস্থ্যকর ডায়েট এবং ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলার মাধ্যমে ওজন কমানোর যে যাত্রা শুরু হয়েছে এই সপ্তাহেও সেই অভ্যাসগুলোর চর্চা চালিয়ে যেতে হবে স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নেওয়া বা শরীরচর্চা যতটা চ্যালেঞ্জিং মনে হচ্ছিলো তা এ সপ্তাহে আরও সহজে আয়ত্তে চলে আসবেগত সপ্তাহে হয়তো অনেকে প্রথমবারের মত শরীরচর্চা করা শুরু করেছেন বা অনেকদিন পর ব্যায়াম করেছেন এ কারণে শরীরে একটু ব্যথা থাকতে পারে তবে দুশ্চিন্তার কিছু নেই আগামী কয়েকদিনের মধ্যে এটি পুরোপুরি ঠিক হয়ে যাবেগত সপ্তাহে মোট ১৫০ মিনিট বা আড়াই ঘণ্টা ব্যায়ামের লক্ষ্য পূরণ করতে না পারলেও ঘাবড়ে যাবেন না আস্তে আস্তে ব্যায়ামের সময় বাড়ান ব্যায়াম শুরু করে তা নিয়মিত চালিয়ে যাওয়া গুরুত্বপূর্ণ সময়ের সাথে সম্পূর্ণ প্রক্রিয়াটি সহজ হয়ে আসবে এই সপ্তাহে ওজন কমানোর ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর সকালের নাস্তার আরও কিছু টিপস নিয়ে আলোচনা করা হবেআপনি প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু না করে থাকলে ১২ সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায় এর প্রথম সপ্তাহের কার্যক্রম দেখুন ১ বাড়িতে ওজন মাপার যন্ত্র থাকলে প্রতিদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে ওজন মাপবেন গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রতিদিন এভাবে ওজন পরিমাপ করে তাদের মধ্যে ওজন কমানোর জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার ও ব্যায়ামের অভ্যাস মেনে চলার সম্ভাবনা বেশি২ ব্যায়ামের রুটিন অনুযায়ী একটি চার্ট বানান প্রতিদিনের লক্ষ্য পূরণ করার পর চার্টে টিক (✓) চিহ্ন দিন এটি প্রতিদিন ব্যায়াম করার জন্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করবে৩ সারাদিনে অর্থাৎ তিনবেলার খাবার এবং স্ন্যাকস হিসেবে কী খাবেন তা সকালেই নির্ধারণ করে ফেলুন এতে বাজার করতে সুবিধা হবে আর ক্ষুধা লাগলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা কমে আসবে৪ চাকফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে এই সপ্তাহ থেকে চিনি ছাড়া খাওয়া শুরু করুন এভাবে সারাদিনে চিনি থেকে আসা বেশ অনেকগুলো ক্যালরি এড়িয়ে ফেলা সম্ভব হবে নতুন করে ব্যায়াম করা শুরু করলে সারা শরীরে ব্যথা হওয়া খুবই স্বাভাবিক তবে এই ব্যথার কারণে ব্যায়াম করার উদ্যম হারিয়ে ফেলা যাবে না অভ্যাস না থাকার কারণে গত সপ্তাহে ব্যায়াম করতে শারীরিকভাবে বেশ কষ্ট হয়ে থাকতে পারে তবে শরীরচর্চা চালিয়ে গেলে আগামী সপ্তাহ শেষেই হয়তো এই ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে তাই নিজেকে ব্যায়াম চালিয়ে যেতে উদ্বুদ্ধ করতে হবেব্যায়াম করা চালিয়ে যাওয়া সহজ করার জন্য নিচে ৭টি টিপস তুলে ধরা হলো—১ নিজেকে অনুপ্রেরণা দিনব্যায়ামের মূল লক্ষ্য হলো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের মাধ্যমে ওজন কমিয়ে আনা – এ ব্যাপারটি নিজেকে বারবার মনে করিয়ে দিতে হবে ব্যায়াম যে পুরোপুরি অভ্যাসের ব্যাপার সেটি বুঝতে পারলে শরীরচর্চাকে আর কঠিন কোনো চ্যালেঞ্জ মনে হবে না২ রুটিন মেনে চলুনসপ্তাহের শুরুতেই ঠিক করে নিন আগামী সপ্তাহে কখন কোথায় কীভাবে ব্যায়াম করবেন এভাবে প্রতিদিনের স্বাভাবিক কাজকর্মের মত ব্যায়ামও রুটিনের একটি অংশ হয়ে যাবে বাইরে গিয়ে দৌড়ানোর বা শরীরচর্চা করার পরিকল্পনা থাকলে আগের দিন রাতে ঘুমানোর আগে জামাকাপড় পানির বোতল ও ব্যাগ গুছিয়ে রাখা যেতে পারে৩ অন্যদের সাথে লক্ষ্য শেয়ার করুননিজের অগ্রগতি ও লক্ষ্য কোনো আত্মীয় ভালো বন্ধু বা কাছের সহকর্মীর সাথে শেয়ার করতে পারেন এটি আপনাকে লক্ষ্যে স্থির থাকতে সাহায্য করবে৪ সঙ্গী বানিয়ে নিনবাড়ির অন্যান্য সদস্যও যদি আপনার সাথে ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার অভ্যাস শুরু করে তাহলে ওজন কমানোর প্রক্রিয়াটি অনেকটাই সহজ হয়ে যাবে এতে একেকজনের জন্য একেক রকম রান্না করার ঝামেলা থাকবে না অন্যের অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসে প্রভাবিত হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যাবে এছাড়া প্রথম কয়েক সপ্তাহে ব্যায়াম করার কষ্টও ভাগাভাগি করে নেওয়া যাবে পরিবারের সদস্য ছাড়া কোনো বন্ধুকেও ওজন কমানোর সঙ্গী বানিয়ে নিতে পারেন৫ পরিবর্তনের মানসিকতা রাখুনযেকোনো এক ধরনের ব্যায়াম বা খাবার ভালো নাও লাগতে পারে তাই বলে স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া বা শরীরচর্চা করা একেবারেই ছেড়ে দেওয়া ঠিক নয় জিমে যেতে ভালো না লাগলে সাইক্লিং দৌড় বা সাঁতার বেছে নেওয়া যেতে পারে খাবারের ক্ষেত্রেও তাই৬ নিজেকে পুরস্কার দিনছোট ছোট লক্ষ্য নির্ধারণ করুন কয়েকটি ছোট লক্ষ্য পূরণ করতে পারলে নিজেকে পুরস্কার দিন যেমন পরপর দুই সপ্তাহ ব্যায়াম এবং স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার লক্ষ্য পূরণ করতে পারলে নিজেকে ছোট কোনো উপহার দিন তবে উপহার হিসেবে চিট ডে বা অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার ইচ্ছা থেকে বেরিয়ে আসাই ভালো নিজেকে দেওয়ার মতো পুরস্কার হতে পারে—নতুন পোশাকজিমে যাওয়ার অনুসঙ্গদৌড়ানোর জুতাঅনেকদিনের পরিকল্পনা থাকলেও সময়ের অভাবে পড়া হয় না এমন বই পড়া বা মুভি দেখাচুল কাটাএকটু দূরে কোথাও ঘুরে আসা৭ হাল ছাড়বেন নাসপ্তাহের কোনো একদিন ব্যায়াম বাদ গেলে বা একবেলা অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেললে হতাশ হবেন না বাকি বেলায় আবার নিজের ওজন কমানোর অভ্যাসগুলো চালিয়ে যান হতাশ হয়ে পরের বেলা বা পরেরদিন পুরনো অস্বাস্থ্যকর অভ্যাসে ফেরত গেলে ওজন কমানো কঠিন হয়ে পড়বে ব্যায়াম করতে চাইলে ঘুম সকালবেলা থেকে আগেভাগে উঠে পড়ুন সারারাত না খেয়ে থাকার পর সকালে খালিপেটে ব্যায়াম করা শুরু করলে মাথা ঘুরানো বা ঝিমিয়ে পড়ার মত সমস্যা হতে পারে ব্যায়ামও চলবে মন্থর গতিতে তাই সকালে আগে উঠে নাস্তা করে নিন নাস্তার ১ ঘণ্টার মধ্যে ব্যায়াম করার পরিকল্পনা থাকলে ভারী নাস্তা না করাই ভালোব্যায়ামের পর প্রয়োজনবোধে হালকা কোন খাবার যেমন সেদ্ধ ডিম একটি মালটা বা একটা কলা খেয়ে নিতে পারেন নাস্তায় কী ধরনের খাবার খাওয়া যায় তা নিয়ে বিস্তারিত জানতে ওজন কমানোর প্রথম সপ্তাহ নিয়ে লেখা আর্টিকেলটি পড়তে পারেনসকালের নাস্তায় ওটসঃসকালের নাস্তায় ওটস হতে পারে ওজন কমানোর গুরুত্বপূর্ণ একটি হাতিয়ার এর স্বাদ আমরা সাধারণত নাস্তায় যেসব খাবার খাই তা থেকে একটু ভিন্ন তবে সময়ের সাথে আপনি এই স্বাদে অভ্যস্ত হয়ে যাবেন ওটসে প্রচুর আঁশ বা ফাইবার থাকে যা খাবার ধীরে ধীরে হজমে সাহায্য করে এতে ক্যালরির পরিমাণও তুলনামূলকভাবে কম স্টিল কাট ওটস বিভিন্ন সুপারশপ ও কাঁচাবাজারে পাওয়া যায় আধা কাপ দুধ দিয়ে সহজেই আধা কাপ ওটস রান্না করে খাওয়া যায় এর সাথে একটি আপেল বা কলা কিংবা কিছু কিশমিশ যোগ করে নিলে স্বাদ এবং পুষ্টিগুণ দুটোই বাড়বে পেট অনেকক্ষণ ভরে থাকবে দুপুরের খাবারের আগে আর ক্ষুধা লাগবে না — সব মিলিয়ে অতিরিক্ত ক্যালরি খাওয়া থেকে বিরত থাকা সহজ হবেএই সপ্তাহের কাজগুলো শেষ হলে আপনি ওজন কমানোর ৩য় সপ্তাহের কার্যক্রম শুরু করতে পারেন নিয়মিত ব্যায়াম করুনসুস্থ থাকতে এবং শরীরকে ফিট রাখতে একজন পূর্ণবয়স্ক মানুষের ১৫০ মিনিট অ্যারোবিক ব্যায়াম করা উচিত অ্যারোবিক ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে হাঁটা সাঁতার দৌড় সাইকেল চালানো ও টেনিস বা ব্যাডমিন্টন খেলাএছাড়াও সপ্তাহে দুই বার স্ট্রেংথ ট্রেনিং করা উচিত যা মাংশপেশিকে শক্তিশালী করে তোলে এর মধ্যে রয়েছে ভার উত্তোলন যোগব্যায়াম বা ইয়োগা বাগানে কাজ করা এবং পুশ আপ ইউটিউব বা গুগলে নিচের শব্দগুলো লিখে খুঁজলেই স্ট্রেংথ ট্রেনিংএর নির্দেশনাযুক্ত এমন অনেক ভিডিও পেয়ে যাবেন এমন কিছু শব্দ হলো—PushupPullupPlSquat ওজন কমানোর চতুর্থ সপ্তাহে পদার্পণ করায় আপনাকে অভিনন্দন অতিরিক্ত ওজন কমিয়ে ফেলার ডায়েট মেনে চলার পাশাপাশি নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস চালিয়ে যাওয়া এখন হয়তো আগের চেয়ে অনেকটাই সহজ হয়ে এসেছেএ সপ্তাহেও স্বাস্থ্যকর খাবারগুলো পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার চর্চা চালিয়ে যান সাথে ব্যায়ামের প্রতি বাড়তি যত্ন নিন গত সপ্তাহে যদি আড়াই ঘণ্টার ব্যায়ামের লক্ষ্য পূরণে সফল না হয়ে থাকেন তাহলে এই সপ্তাহে সেই লক্ষ্য পূরণ করে ফেলুনবিগত কয়েক সপ্তাহ ধরে অনেকে নতুন করে ব্যায়াম করছেন এ কারণে হয়তো ক্ষুধা কিছুটা বেড়ে গেছে প্রতিবেলার খাবারের পাশাপাশি দিনে দুইএকবার স্ন্যাকসজাতীয় হালকা কোনো কিছু খাওয়া হচ্ছে এই সপ্তাহে এসব হালকা নাস্তার লোভ সামলানোর টিপস এবং বিভিন্ন ধরনের খাবার খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা মোকাবেলার উপায় তুলে ধরা হয়েছেআপনি প্রথম সপ্তাহ থেকে শুরু না করে থাকলে ১২ সপ্তাহে ওজন কমানোর উপায়এর প্রথম সপ্তাহের কার্যক্রম দেখুন ১ মিল প্ল্যানিং করুন মিল প্ল্যানিং অর্থ আগে থেকে কী কী খাবেন তা ঠিক করে রাখা আগামী ৭ দিন তিন বেলায় কী কী খাবেন তার একটা খসড়া তৈরি করুন প্ল্যান করার সময় বিগত সপ্তাহগুলোর স্বাস্থ্যকর ডায়েট ও খাবারের পরিমাণ নিয়ে দেওয়া পরামর্শগুলো মাথায় রাখুন২ ক্ষুধা লাগলে হালকা কিছু খেয়ে নিলে কোনো ক্ষতি নেই তবে একটু পর পর কিছু না কিছু খাওয়ার প্রবণতা থেকে বেরিয়ে আসতে হবে তাই তিন বেলার খাবারের পাশাপাশি হালকা নাস্তায় এ সপ্তাহে কোন দিন কী খেতে চান তা ভেবে রাখুন এতে ক্ষুধা লাগলে অস্বাস্থ্যকর খাবার খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা কমে আসবে৩ এবার এ সপ্তাহের মিল প্ল্যানের খসড়া অনুযায়ী সাপ্তাহিক বাজারের তালিকা তৈরি করে ফেলুন এবং সেই অনুযায়ী বাজার করুন এর ফলে ক্রেভিং হলেও উপকরণ হাতের কাছে না থাকায় অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে কারণ বাজারে গিয়ে সেই খাবার বা খাবারের উপকরণ কিনে আনার চেয়ে বাড়িতে থাকা পুষ্টিকর খাবার খাওয়াই সহজ মনে হতে পারে এছাড়া সময় ও অর্থ সাশ্রয় হয়৩ হালকা নাস্তা হিসেবে কাজে যাওয়ার সময় একটা বক্সে ফল শশা গাজর বা টমেটো কেটে সাথে নিয়ে যেতে পারেন বিরতির সময় সেটা খেয়ে নেয়া যাবে আবার ৭৮ টা বাদাম একটা প্যাকেট করে সাথে রাখতে পারেনএছাড়া নাস্তাটি ঘরে তৈরি কোন স্বাস্থ্যকর ও মুখরোচক খাবারও হতে পারে সপ্তাহের শুরুতে প্রতিদিনের স্ন্যাকস পরিকল্পনা করে সে অনুযায়ী সব গুছিয়ে রাখলে বা সাথে খাওয়ার মত কিছু থাকলে হয়তো পুরিসিঙ্গারা চিপসচককোকের মত অস্বাস্থ্যকর নাস্তার প্রতি আকর্ষণ ঠেকানো কিছুটা সহজ হবে তিনবেলার খাবারের মাঝে ক্ষুধা লাগলে যদি আপনি একটি স্বাস্থ্যকর নাস্তা বেছে নেন তাহলে তা আপনার ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে কারণ এতে ব্যায়ামের পর বা দুইবেলার খাবারের মাঝের সময়টায় দুর্বল লাগবে না তাছাড়া দুপুরে বা রাতে বেশি খাবার খেয়ে ফেলার প্রবণতা বা কোনো অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা প্রতিরোধ করা সম্ভব হবেআমাদের স্বাস্থ্যকর নাস্তা তালিকায় কিছু কম ক্যালরিযুক্ত নাস্তার নাম উল্লেখ করা হলো এগুলো পরিমিত পরিমাণে খেলে পুষ্টি পাওয়া যাবে পেট ভরবে এবং ওজনও বাড়বে ও না যেমন শসাগাজরটমেটো১টি আপেল১টি মাল্টা৩/৪ কাপ টক দই (চিনি ছাড়া)আধা কাপ সেদ্ধ ছোলা১টি সেদ্ধ ডিম১টি মাঝারি কলা৭৮ টা বাদাম খাবারের লোভ সামলানোর টিপস ক্ষুধা লাগলে প্রথমে দুই গ্লাস পানি খেয়ে নিন এরপর এসব নাস্তা খান এগুলো পেট পুরোপুরি ভরিয়ে ফেলার উদ্দেশ্যে খাবেন না নাস্তা হিসেবে সাময়িকভাবে ক্ষুধা মেটানোর জন্য খাবেনএছাড়া অস্বাস্থ্যকর নাস্তার বিকল্প হিসেবে একই ধরনের স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিতে পারেন যেমন— চকলেট বা মিষ্টির বদলে মাঝারি আকারের দুটি খেজুর বেছে নিন খাবার খাওয়ার পর ডেজার্ট খাওয়ার অভ্যাস থাকলে ১ টেবিল চামচ কিশমিশ বেছে নিতে পারেন অনেক সময় আমাদের কোনো খাবার খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা সৃষ্টি হয় ইচ্ছাশক্তি থাকলেও ক্রেভিং হলে সেই লোভ সংবরণ করা বেশ চ্যালেঞ্জিং হয়ে পড়েকিছু বিষয় এই তীব্র আকাঙ্ক্ষার পেছনে কাজ করতে পারে যেমন—আবেগপ্রবণ অবস্থামানসিক চাপএকঘেয়েমি বা বোরড হওয়া অনেকদিনের পুরনো অভ্যাসহীনমন্যতাখাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা বা ক্রেভিংস সামলাতে নিচের ৮টি টিপস মেনে চলুন—বেশিক্ষণ ক্ষুধা পেটে থাকবেন নাক্ষুধা লাগলে ক্রেভিং বেড়ে যেতে পারে তাই ক্ষুধা লাগলে শরীরে শক্তি যোগাতে হালকা কোনো খাবার খেয়ে নিন উপরে উল্লেখিত স্বাস্থ্যকর নাস্তার তালিকা থেকে আপনার পছন্দের খাবারটি বেছে নিতে পারেনপানি পান করুপানি পান করলে পেট ভরে তাই পানি খাওয়ার মাধ্যমে অনেকের জন্য ক্রেভিং সামলানো বেশ সহজ হয়ে যায় পানির বদলে চিনি ছাড়া চাকফির মতো গরম কোনো পানীয়ও এক্ষেত্রে কাজ করতে পারেঅন্য কাজে মনোযোগ দিনযেই খাবার খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা তৈরি হয় সেই সংক্রান্ত বিভিন্ন চিন্তা মাথায় ঘোরাঘুরি করতে পারে তাই সাময়িকভাবে নিজেকে অন্য কোনো কাজে ব্যস্ত রাখুন হাঁটতে বের হয়ে যান সময় নিয়ে গোসল করুন বা গান শুনুন অনেকদিন ধরে যোগাযোগ করা হয় না এমন বন্ধুকে ফোন করে খোঁজখবর নিতে পারেনসুগারফ্রি চুইংগামসুগারফ্রি চুইং গাম চিবানোর মাধ্যমে অনেকে এসব ক্ষুধা মোকাবেলা করতে সফল হন তবে অতিরিক্ত চুইং গাম চিবানো যাবে না দিনে ২০টির বেশি চুইং গাম চিবানোর ফলে আপনি অসুস্থ হয়ে যেতে পারেনদাঁত ব্রাশ করুনটুথপেস্ট দিয়ে দাঁত ব্রাশ করতে পারেন ব্রাশ করার পর মুখ পরিষ্কার ও ফ্রেশ লাগে এভাবে কেউ কেউ ক্রেভিং থেকে মুক্তি পেয়ে থাকেন প্রলোভন কমানোর ব্যবস্থা নিনহাতের নাগালে বা চোখের সামনে যদি অস্বাস্থ্যকর খাবার না থাকে তাহলে সেগুলোর ক্রেভিং হওয়ার সম্ভাবনাও কমে যায় তাই এগুলো কেনা থেকে বিরত থাকুন একান্ত প্রয়োজন না থাকলে খাবার অর্ডার করার অ্যাপস ফোন থেকে আনইন্সটল করে ফেলুননিজেকে সময় বেঁধে দিনক্রেভিং সাধারণত ক্ষণস্থায়ী হয় তাই মাত্র ৩০ মিনিটের জন্য ক্রেভিং সামলানোর চেষ্টা করে দেখুন এই সময়ে অন্য কোনো কাজে মনোনিবেশ করুন হয়তো আধা ঘণ্টা পর আপনার সেই খাবার খাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা চলে যাবেপরিমিত পরিমাণে ক্রেভিং মেটানযদি সেই তীব্র আকাঙ্ক্ষা কোনোভাবেই দূর করা না যায় তাহলে খাবারটি খেতে পারেন তবে অবশ্যই সামান্য পরিমাণে খাবেন যেন ক্রেভিং মিটে যায় পেট ভরানোর জন্য না খেয়ে এভাবে মানসিক তৃপ্তির জন্য খেলে ক্যালরির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণ করা যাবে দিনের বাকি খাবারগুলো তুলনামূলকভাবে কম ক্যালরিযুক্ত হলে আপনার ওজন কমানোর পথে নিজেকে ধরে রাখা সহজ হবে ১ বাড়িতে থাকা সব ধরনের খাবার বিশেষ করে প্যাকেটজাত খাবারের একটি তালিকা তৈরি করুন অস্বাস্থ্যকর নাস্তাগুলো কোথায় আছে তা খুঁজে বের করুন কেকমিষ্টি চকলেট বিস্কুট চিপসচানাচুর আইসক্রিম ভাজাপোড়া নিমকি ও অন্যান্য স্ন্যাকস – যেগুলোতে ফ্যাট চিনি ও লবনের পরিমাণ অনেক বেশি কিন্তু পুষ্টি একেবারেই কম – এগুলোকে একত্র করুনএবার ৩টি কাজ করতে পারেন—এগুলো বাসা থেকে বের করে ফেলুনসম্ভব হলে দোকানে ফেরত দিয়ে নিত্য প্রয়োজনীয় অন্য জিনিস কিনুনযদি বাড়িতেই রাখতে হয় তাহলে হাতের নাগালের বাইরে রাখুন যেন সহজেই এগুলো খেয়ে ফেলা ঠেকানো যায়ফ্রিজে রাখতে হলে ভেতরের দিকে স্বাস্থ্যকর খাবারগুলোর পেছনে রাখুন এতে ক্ষুধা লাগলে স্বাস্থ্যকর খাবারগুলো খাওয়ার সম্ভাবনা বাড়বে আর অস্বাস্থ্যকর স্ন্যাকস খাওয়ার সম্ভাবনা কমে যাবে২ ব্যায়ামকে দৈনন্দিন জীবনের অংশ বানিয়ে ফেললে নিজের অজান্তেও ক্যালরি খরচ হবে ফলে ওজন কমানো আরও সহজ হয়ে যাবে নিচের অ্যাকশন পয়েন্টগুলো থেকে একেকদিন একেকটি পয়েন্ট বেছে নিতে পারেনআজকে আমি ১০০০০ কদম হাঁটবআজকে আমি বাসে/রিকশায়/গাড়িতে না চড়ে হেঁটে বা সাইকেল চালিয়ে যাওয়া আসা করবআজকে বন্ধুদের সাথে হাঁটতে বের হবোআজকে টিভি দেখার সময়ে বসে না থেকে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে পা নেড়ে নেড়ে হাঁটবোএই সপ্তাহের কাজগুলো শেষ হলে আপনি ওজন কমানোর ৫ম সপ্তাহের কার্যক্রম শুরু করতে পারেন গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো ঘুমের সময়ে শ্বাস নিতে সমস্যা হতে পারে এর কারণ এখনো মোটা দাগে জানা না গেলেও গর্ভাবস্থায় হরমোন শ্বসনতন্ত্র হার্ট ও রক্ত সরবরাহ ব্যবস্থা—এসবের পরিবর্তনের কারণে এরকম হতে পারে বলে ধারণা করা হয় কিছু ক্ষেত্রে কাত হয়ে ঘুমালে এই সমস্যা কিছুটা এড়ানো যেতে পারে এ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় রাইনাইটিস হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় একারণেও শ্বাস নেওয়ায় সমস্যা হতে পারে এ ধরনের কোনো সমস্যা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন যদি রাতে ঘুমের সমস্যা একদমই দূর না হয় তাহলে দিনে পর্যাপ্ত ঘুমিয়ে নিলে সমস্যা হওয়ার কথা নয় তবে রাতে ভালোমতো ঘুমানোর জন্য ঘরোয়া উপায়গুলো মেনে চলার চেষ্টা করবেন প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিন গর্ভাবস্থায় মেলাটোনিন খাওয়া নিরাপদ কি না সেই বিষয়ে এখনো যথেষ্ট তথ্য জানা যায়নি এজন্য এই সময়ে মেলাটোনিন এড়িয়ে যাওয়াই শ্রেয় ঘুমের সমস্যা গর্ভধারণের পরপরই শুরু হতে পারে তবে সাধারণত গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে ঘুমের সমস্যাও বাড়তে থাকে গর্ভধারণের পর থেকে সৃষ্টি হওয়া ঘুমের সমস্যা প্রসবের পরেও থেকে যেতে পারে শিশুর জন্ম ও পারিপার্শ্বিক নানান পরিবর্তনের কারণে এরকম হতে পারে তবে সময়ের সাথে সাধারণত ঘুমের সমস্যা কমে আসে ঘরোয়া উপদেশগুলো ভালো ঘুমের জন্য সহায়ক হতে পারে গর্ভাবস্থায় অন্যান্য সময়ের চেয়ে বেশি অবসাদ বা ক্লান্তি বোধ করা স্বাভাবিক সাধারণত গর্ভবতী হওয়ার প্রথম তিন মাসে প্রায় সকল হবু মা এই সমস্যার মুখোমুখি হয়ে থাকেন এরপরে এই লক্ষণ কমে আসলেও অনেকের ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার শেষের তিন মাসে এই সমস্যা আবার ফিরে আসেঅনেকে গর্ভাবস্থায় প্রচণ্ড ক্লান্তি বোধ করে থাকেন এমন প্রচণ্ড ক্লান্তি বোধ করাও অস্বাভাবিক নয় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে যেমন আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা ও ডিপ্রেশন এমনটা হলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিশ্চিন্ত হয়ে নেওয়া ভালোএ ছাড়াও আপনি যদি সম্পূর্ণ গর্ভকালজুড়ে অবসাদ বোধ করেন অথবা আপনার ক্লান্তিবোধ ক্রমাগত বেড়ে যেতে থাকে তাহলে একজন চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন অবসাদ বা ক্লান্তি বলতে মূলত কোনো কাজ করার শক্তি বা বল না পাওয়াকে বোঝায় গর্ভকালীন অবসাদে আপনার সকালে বিছানা থেকে উঠতে যেমন ইচ্ছে করবে না তেমনি সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথেই হয়তো আপনার ঘুমাতে ইচ্ছে করবে মাঝের সময়টাতেও আপনার সারাদিন ঝিমুনিভাব থাকতে পারে অথবা খুবই আলসেমি লাগতে পারে আপনার গর্ভাবস্থার একদম শুরুর দিক থেকেই অবসাদ বা ক্লান্তিবোধ শুরু হতে পারে এমনকি কোনো কোনো হবু মা গর্ভধারণের মাত্র এক সপ্তাহ পর থেকেও ক্লান্ত লাগার বিষয়টি লক্ষ করতে পারেনসাধারণত গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস পর থেকে এই ক্লান্তিভাব কমতে থাকে গর্ভধারণের শেষের তিন মাসে এই লক্ষণ আবারও দেখা দিতে পারে তবে গর্ভাবস্থার অন্যান্য লক্ষণ গুলর মতো এটিও একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে এলার্জি ছোঁয়াচে নয় এটি শরীরের একটি বিশেষ প্রতিক্রিয়া আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন ক্ষতিকর নয় এমন জিনিসকেও ভুলে শত্রু ভেবে বসে তখন শরীরে এলার্জির লক্ষণ দেখা দেয় ভিন্ন ভিন্ন মানুষের ভিন্ন ভিন্ন জিনিসে এলার্জি থাকতে পারে এলার্জির চিকিৎসায় বিভিন্ন ধরনের ঔষধ ব্যবহার করা হয় এর মধ্যে একটি হলো স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ এগুলো সাদা রঙের গোল গোল ছোটো বড়ি হিসেবে কিনতে পাওয়া যায়স্টেরয়েড শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে দুর্বল করে দেওয়ার মাধ্যমে এলার্জির লক্ষণ কমিয়ে আনে তবে দীর্ঘদিন ধরে এসব ঔষধ সেবন করলে ইনফেকশন গ্যাস্ট্রিকের সমস্যা বদহজম হাড় ক্ষয় ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের মতো বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারে তাই ডাক্তারের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ছাড়া স্টেরয়েড ব্যবহার করা একেবারেই উচিত নয় খাদ্যাভ্যাস ও জীবনযাত্রায় কিছু বিধিনিষেধ মেনে চললে এলার্জি অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধ সেবন করা যেতে পারে তবে এলার্জির কারণেই এসব গোটা হচ্ছে কি না সেটি খুঁজে বের করা জরুরি এলার্জির কারণে শ্বাসকষ্ট হতে পারে ইতোমধ্যে অ্যাজমার মতো শ্বাসতন্ত্রের রোগ থাকলে রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারে গর্ভাবস্থায় পায়খানার সাথে রক্ত গেলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিন সাধারণত পাইলস অথবা গেজ রোগে ভুগলে গর্ভকালীন সময়ে আপনার পায়খানার সাথে রক্ত যেতে পারে তবে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করবেন না সময়মতো চিকিৎসা করলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভবযেহেতু দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে এসব রোগ হতে পারে সেহেতু কোষ্ঠিকাঠিন্য প্রতিরোধে নিয়মিত শাকসবজি খাওয়ার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থায় এক সপ্তাহে তিনবারের কম পায়খানা হলে তা কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ আপনি এই সমস্যায় ভুগলে নিয়ম মেনে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেন পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে নিয়মিত শাকসবজি খাওয়ার এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার অভ্যাস করবেনএতেও সমস্যার সমাধান না হলে ডাক্তারের পরামর্শে ল্যাকটুলোজ সিরাপ সেবন করতে পারেন তবে গর্ভকালীন সময়ে নিজে থেকে অন্য কোনো ঔষধ খাবেন না সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম তিনমাসে মাথা ঘুরানোর সমস্যাটি বেশি দেখা যায় তবে অনেকে পুরো গর্ভাবস্থা জুড়েই কমবেশি এই সমস্যায় ভুগতে পারেন গর্ভকালীন প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষের দিকে আপনার শরীরে রক্ত চলাচল প্রায় দেড়গুণ বেড়ে যায় একারণে অতিরিক্ত গরম লাগা ও ঘাম হওয়ার পাশাপাশি মাথা ঘুরাতে পারে শতকরা প্রায় ৪৬ জন নারী গর্ভাবস্থায় অজ্ঞান হওয়ার সমস্যায় ভুগে থাকেন এটি একটি সাধারণ উপসর্গ যা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই কোনো মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করে না তবে গর্ভাবস্থায় অজ্ঞান হওয়ার সাথে মা ও শিশুর কিছু স্বাস্থ্যঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক থাকতে পারে আবার এটি অন্য কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণ হিসেবেও দেখা দেখা দিতে পারেএজন্য অজ্ঞান হওয়ার ঘটনাটি আপনার চিকিৎসককে জানাতে হবে প্রয়োজনীয় পরামর্শ নিতে হবে এবং অজ্ঞান হওয়ার পাশাপাশি আর কোনো লক্ষণ আছে কি না তা খেয়াল রাখতে হবে অতিরিক্ত মানসিক চাপ থেকে গর্ভবতী নারী অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন যেমন খুব বেশি মানসিক কষ্ট পেলে কিংবা অনেক রেগে গেলে তা থেকে অজ্ঞান হওয়ার সম্ভাবনা থাকে গর্ভাবস্থায় আপনার গরম লাগার সাথে সাথে যদি আপনার শরীরের তাপমাত্রাও বেড়ে যায় তবে সেটি আপনার গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে প্রথম ১২ সপ্তাহে যদি আপনার শরীরের তাপমাত্রা ৩৯২° সেন্টিগ্রেডের বেশি থাকে এক্ষেত্রে আপনার শিশুর জন্মগত ত্রুটির ঝুঁকি বাড়েআবার গবেষণায় দেখা গেছে যে অতিরিক্ত গরম থেকে মায়ের শরীরে পানিশূন্যতা তৈরি হলে গর্ভের শিশু স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন উচ্চতা মাথা ও বুকের পরিধি/বেড় নিয়ে জন্মানোর ঝুঁকি থাকে কিছু গবেষণায় গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরমের সাথে গর্ভের শিশুর সময়ের আগে জন্মানো কিংবা মৃতপ্রসবের মতো মারাত্মক জটিলতারও সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় গর্ভাবস্থায় আপনি পেটে নখ দিয়ে চুলকালে বাচ্চার কোনো সমস্যা হবে না তবে নখ দিয়ে চুলকানোর ফলে ত্বকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষত সৃষ্টি হয় এসবের ভেতর দিয়ে জীবাণু ঢুকে ত্বকে ইনফেকশন ঘটাতে পারে সঠিক চিকিৎসার অভাবে মারাত্মক রূপ নিতে পারেতাই চুলকানি উঠলেও ত্বক না চুলকানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন চুলকানোর পরিবর্তে আঙুলের ত্বক দিয়ে চুলকানি ওঠা স্থানটি আলতো করে চেপে চেপে নিন ত্বকে আঘাত ও ইনফেকশন এড়াতে নখ ছোটো করে কেটে নিন এবং সবসময় মসৃণ ও পরিষ্কার রাখুন গর্ভাবস্থার পেটের চুলকানি কমাতে ঘরোয়া সমাধান অনুসরণ করতে পারেন এতেও চুলকানি না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ডাক্তার উপসর্গ অনুযায়ী উপযুক্ত ও নিরাপদ ক্রিম অথবা মলম ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারবেন তবে এমন অনেক ঔষধ আছে যা সাধারণ অবস্থায় ব্যবহারের জন্য নিরাপদ হলেও গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা নিরাপদ নাও হতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া চুলকানির ক্রিম অথবা মলম ব্যবহার করবেন নাতবে চুলকানির স্থানে ঘরোয়াভাবে মেনথলযুক্ত অথবা ক্যালামাইনযুক্ত ক্রিম অথবা লোশন ব্যবহার করতে পারেন এগুলো গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা নিরাপদ এগুলো চুলকানি থেকে কিছুটা আরাম দিতে পারে গর্ভকালীন সময়ে আপনার ঘা আসলে ঠিক কোন কারণে হয়েছে তার ওপর নির্ভর করবে যে আপনার বাচ্চার আদৌ কোনো ক্ষতি হবে না কি হবে না সাধারণ চুলকানির কারণে নখের আঁচড় লেগে ঘা হয়ে থাকলে সময়মতও ডাক্তারের পরামর্শ মেনে ঔষধ সেবন করলে এবং চুলকানো থেকে বিরত থাকলে সেটা সাধারণত ভালো হয়ে যায়তবে কোনো নির্দিষ্ট রোগের কারণে ঘা হলে সেই রোগের ওপর নির্ভর করে গর্ভবতী মা ও তার শিশুর নানান ধরনের জটিল সমস্যা হতে পারে তাই কোথাও ঘা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন সেই সাথে চুলকানি হলেও নখ দিয়ে ত্বক চুলকানো থেকে বিরত থাকুন গর্ভাবস্থায় চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া চোখে চুলকানি হওয়া কিংবা চশমা বা লেন্সের পাওয়ার পরিবর্তন হয়ে যাওয়ার মতো চোখে ঝাপসা দেখাও স্বাভাবিক তবে এর সাথে অন্য জটিলতার লক্ষণগুলো থাকবে না গবেষণায় দেখা গেছে গর্ভাবস্থায় প্রায় ১৫ শতাংশ গর্ভবতী মায়েদেরই চোখের বিভিন্ন পরিবর্তন বা দেখার সমস্যা হতে পারে তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব নিয়ে দুশ্চিন্তার কারণ নেই গর্ভাবস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিক থেকে সাধারণত চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা শুরু হতে পারে তবে কোনো কোনো ক্ষেত্রে মায়েরা আরও আগে থেকে এই সমস্যা লক্ষ করে থাকেন গর্ভাবস্থার শেষে প্রসবের পরবর্তী ৬ সপ্তাহ পর্যন্তও এই সমস্যা আপনাকে ভোগাতে পারে গর্ভাবস্থায় তীব্র মাথাব্যথার সাথে চোখে ঝাপসা দেখা প্রিএক্লাম্পসিয়ার লক্ষণ হতে পারে যেটি আপনার ও আপনার গর্ভের শিশু উভয়ের জন্যই বিপজ্জনকএসময় দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন তবে অনেকসময় মাইগ্রেন এর কারণেও মাথা ব্যথার সাথে চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা হতে পারে গর্ভাবস্থায় জ্বর কমাতে নির্দিষ্ট ডোজ অনুযায়ী প্যারাসিটামল খাওয়া যায় এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ফার্মেসি থেকে কিনে এনে এর সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী এটি সেবন করতে পারবেন এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কিংবা আগে থেকে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিতে পারেনউল্লেখ্য প্যারাসিটামল কেনার সময়ে সাথে ক্যাফেইন কোডেইন অথবা অন্য কোনো উপাদান যোগ করা আছে কি না সেটা দেখে নিন অনেকসময় এই ধরনের ঔষধের ক্ষেত্রে নামের আগেপরে এক্সট্রা শব্দটা যোগ করা থাকে গর্ভাবস্থায় এই জাতীয় ঔষধের পরিবর্তে সাধারণ প্যারাসিটামল বেছে নেওয়া উচিত নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করে ডিজিটাল থার্মোমিটারের সাহায্যে তাপমাত্রা মাপতে পারেন—১ থার্মোমিটারের সামনের অংশ ভালোমতো সাবান ও ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে শুকিয়ে নিন২ নির্দেশিকা অনুযায়ী থার্মোমিটার অন করুন৩ থার্মোমিটারের সামনের অংশ জিহ্বার নিচে ও মুখের যতটা সম্ভব ভেতরের দিকে ঢোকান৪ এবার মুখ ভালোমতো বন্ধ করুন এমনভাবে বন্ধ করবেন যেন দুই ঠোঁট দিয়ে থার্মোমিটার সম্পূর্ণ চেপে থাকে৫ থার্মোমিটারের বিপ বা নির্দিষ্ট শব্দ হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন৬ শব্দ শোনার পর থার্মোমিটার মুখ থেকে বের করে তাপমাত্রা একটা ডায়েরিতে লিখে রাখুন সাথে তারিখ ও সময় লিখে রাখতে পারলে ভালো হয়৭ থার্মোমিটার বগলে দিয়েও তাপমাত্রা মাপতে পারেন সেক্ষেত্রে এমনভাবে বগল ভাঁজ করবেন যেন থার্মোমিটার বগলে আঁটসাঁট হয়ে থাকে গর্ভাবস্থার ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহ হলো প্রসবের স্বাভাবিক সময় তাই এই সময়ের মধ্যে পানি ভাঙলে সেটাকে স্বাভাবিক হিসেবে ধরা হয় শিশুর পূর্ণ বিকাশ হওয়ার আগে যদি পানি ভেঙে তার জন্ম হয়ে যায় তাহলে তাকে বাঁচানো কঠিন হয়ে পরে আর পানি ভাঙার পর সাধারণত খুব বেশিদিন অপেক্ষাও করা যায় না তাই গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে পানি ভাঙলে গর্ভের শিশুকে বাঁচাতে পাগর্ভের রার সম্ভাবনা খুব কম প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হয়ে যাওয়ার পরও যদি পানি না ভাঙে সেক্ষেত্রে ডাক্তার কৃত্রিমভাবে আপনার পানি ভাঙার ব্যবস্থা করতে পারেন পানিটি যেই থলির ভেতর আছে অর্থাৎ এমনিওটিক থলির গায়ে বিশেষ যন্ত্রের সাহায্যে ফুটো করা হতে পারে এই প্রক্রিয়াটিকে বলা হয় এমনিওটোমি এর ফলে পানি ভেঙে যাবে এবং প্রসব প্রক্রিয়া চালিয়ে নেওয়া সম্ভব হবে সিজার এক ধরনের অপারেশন এতে পেট কেটে গর্ভের শিশুকে বের করে আনা হয় পেট কাটার সময় পেটের বাইরের দিক থেকে ভেতর পর্যন্ত কয়েক স্তরের চামড়া মেদ ও মাংসপেশির স্তর কাটা পড়ে সিজারের পর এই কাটা স্তর গুলোতে স্কার টিস্যু বা ক্ষত তৈরি হয় এই স্কার টিস্যুগুলো সময়ের সাথে সাথে শক্ত হয়ে আসে ফলে সিজারের পর অনেকে পেটে টান খায় বা সিজারের কাটা জায়গার আশেপাশে পেট শক্ত হয়ে আছে বলে অনুভব হয় গর্ভধারণের শুরু থেকেই আপনার পেট ব্যথা হতে পারে তবে সবার ক্ষেত্রেই যে এই সময় থেকে পেট ব্যথা হবে তা নয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই পেট ব্যথা তেমন দুশ্চিন্তার কারণ নয় আবার গর্ভধারণের পরে পেট ব্যথা না হওয়াও অস্বাভাবিক নয় গর্ভাবস্থায় হালকা পেট ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে প্রতি পাঁচ জন গর্ভবতীর মধ্যে চারজনেরই গর্ভাবস্থায় কোনো না কোনো সময়ে পেট ব্যথা হয় বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম ২০ সপ্তাহে এটি দেখা যায় অধিকাংশ পেট ব্যথা গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে উপশম হয় তবে মনে রাখতে হবে যে পেট ব্যথার সাথে অন্যান্য জটিলতার কারণে ২৮ শতাংশ গর্ভবতী নারীর গর্ভপাত হয়ে থাকে তাই তীব্র ও অবিরাম পেট ব্যথার ব্যাপারে সতর্ক থাকুন কোন ধরনের পেট ব্যথায় দ্রুত ডাক্তারের কাছে যেতে হবে তা জেনে রাখুন গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে বমি হওয়া খুব পরিচিত একটি লক্ষণ এটি সাধারণত গর্ভধারণের ১৬ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে অবস্থার উন্নতি হয় কিংবা সম্পূর্ণ ভালো হয়ে যায়এরপরেও বমি ও পেট ব্যথা হলে সেটা বিভিন্ন গুরুতর জটিলতার লক্ষণ হতে পারে যেমন এসময়ে অ্যাপেন্ডিসাইটিস হতে পারে আবার পিত্তথলিতে কোলেস্টেরল জমে পাথরসহ বিভিন্ন রোগ হতে পারে আবার ফুড পয়জনিং হতে পারে এসব কারণে গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথার সাথে বমি হতে পারে এমনটা হলে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিন আপনার স্মৃতি মন মেজাজ ও মনোযোগে পরিবর্তন আসা গর্ভকালের একটি স্বাভাবিক ও অতিপরিচিত ঘটনা একটি সন্তানকে জন্ম দিতে এবং পরবর্তীতে তার লালন পালন করার জন্য আপনার শরীরে কিছু প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আসাটা স্বাভাবিক তবে যদি আপনার দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্ম এর ফলে বাধা পায় তাহলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন খুব দ্রুত ইমোশন বা আবেগের পরিবর্তন গর্ভাবস্থার প্রাথমিক লক্ষণ হতে পারে তবে একই ধরনের মুড সুইং অনেকসময় মাসিকের আগে আগেও হতে পারে কাজেই গর্ভাবস্থা নিশ্চিত হতে প্রেগন্যান্সি টেস্ট করুন দুজন গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থা যেমন একই রকম না তেমনি সব মায়েদেরও গর্ভাবস্থায় মুড সুইং এর ধরন একই রকম না একজন মা মুড সুইং নিয়ে খুব বেশি সমস্যায় থাকতে পারেন আবার অন্যজনের মুড গর্ভাবস্থার নয় মাসেই একই রকম থাকতে পারে এমনকি একজন মায়ের দুটি ভিন্ন গর্ভাবস্থায়ও দুই ধরনের মুড সুইং হতে পারেতবে যেসব নারীদের মাসিকের আগে মুড সুইং হয়ে থাকে তাদের সাধারণত গর্ভাবস্থায়ও মুড সুইং হবার সম্ভাবনা থাকে গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরই শ্বাসকষ্ট হওয়া স্বাভাবিক প্রায় ৬০ থেকে ৭০ শতাংশ সুস্থ গর্ভবতী মায়ের গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্ট হতে পারে তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে আপনার হৃদরোগ ও ফুসফুসের কোনো রোগের লক্ষণ হিসেবেও শ্বাসকষ্ট হতে পারে শুধুমাত্র গর্ভাবস্থার কারণেই শ্বাসকষ্ট হলে সেটি আপনার জন্য কিছুটা অস্বস্তিকর হলেও আপনার গর্ভের শিশুর জন্য এটি তেমন ক্ষতিকর নয় কেননা গর্ভধারণজনিত কারণে আপনার শ্বাসকষ্ট হলেও আপনার শিশুর শরীরে প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল দিয়ে নিয়মিত অক্সিজেন সরবরাহ হয় গর্ভাবস্থার প্রথম থেকেই শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে তবে প্রসবের সময় কাছে আসতে আসতে এটি অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে যায় গর্ভাবস্থার কারণেই শ্বাসকষ্ট হলে সেটি প্রসব পর্যন্ত থাকতে পারে প্রসবের পর পর আপনার শ্বাসকষ্ট আগের মতো স্বাভাবিক হয়ে যাবে বিশেষত গর্ভাবস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিকে ২৭ সপ্তাহ থেকে ৪০ সপ্তাহের মধ্যে এটি প্রশমিত হতে শুরু করে আপনার যদি আগে থেকেই অ্যাজমা বা হাঁপানির কারণে শ্বাসকষ্ট থেকে থাকে এবং আপনি ইনহেলার ব্যবহারে অভ্যস্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনি আগের মতোই ইনহেলার ব্যবহার করতে পারবেন কারণ ইনহেলার ব্যবহার সাধারণত গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ তবে সাবধানতাবশত প্রয়োজনের অতিরিক্ত ইনহেলার ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকা উচিত বিভিন্ন ভারী কাজ (যেমন সিঁড়ি দিয়ে উঠলে ভারী কিছু বহন করলে) আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারে সেক্ষেত্রে যেকোনো ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকুন তবে নিত্য প্রয়োজনীয় হালকা কাজ এবং হাঁটা চলা বিশ্রাম নিয়ে করতে পারেন স্ট্রেচ মার্ক হচ্ছে সাধারণত গোলাপি অথবা বেগুনিলাল রেখার মত একধরণের দাগ তবে যাদের গায়ের রঙ অপেক্ষাকৃত গাঢ় তাদের ক্ষেত্রে আশেপাশের ত্বকের চেয়ে হালকা রঙের দাগ হতে পারে পরের দিকে রঙ পরিবর্তন হয়ে ফ্যাকাশে সাদা অথবা রূপালি রঙ ধারণ করে স্ট্রেচ মার্ক সাধারণত পেটে বা স্তনেই বেশি দেখা দেয় তবে এর পাশাপাশি উরুতে কোমরে কিংবানিতম্বেও স্ট্রেচ মার্ক দেখা দিতে পারে গর্ভাবস্থায় স্ট্রেচ মার্ক হওয়া বেশ কমন একটি ঘটনা এসময়ে প্রায় ৯০ গর্ভবতী নারীর শরীরেই এমন পরিবর্তন দেখা দিতে পারে সাধারণত গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় বা তৃতীয় ত্রৈমাসিকে স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেয় তবে কারও কারও ক্ষেত্রে পেটের আকার বৃদ্ধি পাওয়ার সাথে সাথেই স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেওয়া শুরু হতে পারে স্ট্রেচ মার্ক মা ও গর্ভের শিশুর কোনো ক্ষতি করে না স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ কোনো অসুখ বা অসুখের লক্ষণ নয় বরং গর্ভাবস্থায় শরীরের স্বাভাবিক পরিবর্তনের একটি অংশ তাই এ নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই অন্যান্য সময়ের চেয়ে গর্ভাবস্থায় নারীদের পড়ে গিয়ে ব্যথা পাওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে এতে হবু মা ও শিশু উভয়েরই ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে হাড় জয়েন্ট ও মাংসপেশিতে আঘাতের সম্ভাবনা থাকে এ ছাড়াও শরীরের অভ্যন্তরীণ রক্তপাত মাথায় আঘাত—এসব প্রসবসংক্রান্ত জটিলতা তৈরি হতে পারে এমনকি মা ও শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত ঘটতে পারে এজন্য গর্ভাবস্থায় পড়ে যাওয়া থেকে সাবধান থাকা খুবই জরুরি ভারসাম্য আগের মতো স্বাভাবিক হতে প্রসবের পর কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে ততদিন পর্যন্ত ওপরে বর্ণিত প্রতিরোধ উপায়গুলো অনুযায়ী সাবধান থাকা জরুরি গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাবের হওয়া প্রতিরোধ করা না গেলেও ওপরের প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণের ব্যায়াম করে এটি নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে সাধারণত গর্ভাবস্থার পুরো সময় জুড়েই ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারেন তবে গর্ভাবস্থার মাঝের তিন মাস অর্থাৎ চতুর্থ মাস থেকে সপ্তম মাস পর্যন্ত প্রস্রাবের বেগ অন্যান্য মাসগুলোর তুলনায় কম থাকে সাধারণত শিশুর জন্মের পর থেকে প্রস্রাবের বেগ স্বাভাবিক হতে থাকে ঘ্রাণের তীব্র অনুভূতি প্রতিরোধ করার জন্য ওপরের ঘরোয়া উপায়গুলো অনুসরণ করতে পারেন এতে বিভিন্ন জিনিসের গন্ধের সাথে মানিয়ে নেওয়া সহজ হতে পারে সাধারণত তীব্র ঘ্রাণের এই সমস্যাটি গর্ভাবস্থার প্রথমদিকেই সবচেয়ে বেশি দেখা যায় গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এটি সাধারণত কমে আসে তবে এরপরেও যদি ঘ্রাণশক্তি তীব্র মনে হয় অথবা বিভিন্ন জিনিসের গন্ধে সমস্যা হচ্ছে বলে মনে হয় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এতে ঘ্রাণশক্তির এমন পরিবর্তন অন্য কোনো রোগের লক্ষণ কি না সেটি নিশ্চিত হওয়া যাবে মুখের পরিচ্ছন্নতায় মাউথওয়াশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে গর্ভাবস্থায় মাউথওয়াশ ব্যবহার করতে পারবেন তবে খেয়াল রাখবেন যাতে মাউথওয়াশটিতে কোনো অ্যালকোহল না থাকে গর্ভাবস্থায় দাঁতের স্কেলিং করানো নিরাপদ বলে বিবেচিত হয় গবেষণায় দেখা যায় গর্ভাবস্থায় দাঁতের স্কেলিং করালে জন্মের সময়ে বাচ্চার কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়ার আশঙ্কা কমে যায় গর্ভকালের প্রথম ট্রাইমেস্টার থেকেই কারও কারও মাড়ি ফুলে যেতে পারে এবং মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে তবে সাধারণত গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যার প্রকোপ বাড়ে তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে মাড়ি ফোলা ও রক্ত পড়ার ঘটনা সাধারণত সবচেয়ে বেড়ে যায় গর্ভাবস্থায় পায়ের রগে টান লাগা খিল ধরা বা কামড়ানো গর্ভকালের দ্বিতীয়ার্ধে অর্থাৎ ২০ সপ্তাহের পর থেকে বেশি হয়ে থাকে একটি গবেষণায় পাওয়া গিয়েছে যে অর্ধেকের বেশি মায়েরা ২৫তম সপ্তাহের পর এই সমস্যার মুখোমুখি হন পায়ের রোগ টানা প্রতিরোধে নিয়মিত পায়ের ব্যায়াম করুন যেমন স্ট্রেচিং ব্যায়াম পায়ের পেশিকে শক্তিশালী করে এবং ব্যথা হওয়া প্রতিরোধ করে ব্যায়ামের পাশাপাশি আরও কিছু উপায় অবলম্বন করে দেখতে পারেন যেমন কাজের ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়া শারীরিক পরিশ্রম করা পর্যাপ্ত পানি পান করা সুষম খাবার খাওয়া ও আরামদায়ক জুতা পরা গর্ভাবস্থায় পায়ের রগ টানে যে ব্যথা হয় তা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের মাঝামাঝি সময় থেকে শুরু হয়ে পুরো তৃতীয় ত্রৈমাসিক জুড়ে থাকতে পারে গর্ভাবস্থায় শরীরের গঠন ও হরমোনের বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে ঘাড়ে ও কাঁধে ব্যথা হতে পারে এটি পায়ের খিল ধরার মতোই স্বাভাবিক তবে কিছু ক্ষেত্রে কাঁধের ব্যথা কোনো গুরুতর অবস্থার ইঙ্গিত হতে পারে যেমন প্রথম ত্রৈমাসিকে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির কারণে এমন ব্যথা হতে পারে এক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয় গর্ভাবস্থায় বিশেষ করে প্রথম ত্রৈমাসিকে বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া খুবই কমন একটি লক্ষণ এতে সাধারণত গর্ভবতী মায়ের অথবা গর্ভের শিশুর ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই৷বরং কিছু গবেষণায় গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে হওয়া বমি ভাব ও বমির সাথে গর্ভপাতের ঝুঁকি কমার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছেতাই গর্ভাবস্থার বমি ভাব নিয়ে সাধারণত খুব বেশি চিন্তিত হওয়ার কিছু নেইতবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত বমি ভাব কিংবা হাইপারএমেসিস গ্র‍্যাভিডেরাম হলে গর্ভের শিশু অনেকসময় স্বাভাবিকের চেয়ে কম ওজন নিয়ে জন্মাতে পারে তাই যদি গর্ভাবস্থায় বমি ভাব অথবা বমি আপনার স্বাভাবিক জীবনযাপনে বাধা হয়ে দাঁড়ায় কিংবা এ নিয়ে আপনার অনেক বেশি দুশ্চিন্তা হতে থাকে তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে বিষয়টি আলোচনা করে নিতে পারেন গর্ভাবস্থার কারণে তৈরি হওয়া বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা সাধারণত শিশুর জন্মের পরেই চলে যায় তবে অন্যান্য কারণে এই সমস্যা হলে নির্দিষ্ট কারণটি খুঁজে বের করে সঠিক চিকিৎসা করাতে হবে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে যোনিপথে রক্তপাত হওয়া বেশ কমন গর্ভাবস্থায় যেহেতু জরায়ুমুখে নতুন রক্তনালী তৈরি হয় তাই যোনিপথ থেকে রক্তপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যায় সাধারণত গর্ভাবস্থায় সহবাস করা নিরাপদ তবে গর্ভাবস্থায় মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হলে সহবাস করা থেকে বিরত থাকতে হবে যোনিপথে রক্তপাত পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেলে আবারও নিরাপদে সহবাস করতে পারবেন বেডরেস্টের প্রয়োজন নেই আপনি স্বাভাবিক সব কাজ করতে পারবেন এমনকি কর্মক্ষেত্রেও যেতে পারবেন তবে ভারী রক্তপাত হলে রক্তপাত পুরোপুরি বন্ধ হওয়ার আগ পর্যন্ত ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকুন আর ক্লান্ত লাগলে অবশ্যই প্রয়োজনমতো বিশ্রাম নিবেন গর্ভাবস্থায় রক্তপাতের অনেক কারণ থাকতে পারে এর মধ্যে কিছু বেশ গুরুতর আবার কিছু তেমন ভয়ের কারণ নয় কাজেই গর্ভাবস্থার যেকোনো সময়ে যোনিপথে যেকোনো ধরনের রক্তপাত লক্ষ করলেই জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে সহজ ভাষায় স্পটিং হলো যোনিপথে হালকা রক্তপাত এটি লাল বা গোলাপি রঙের এবং খুব অল্প পরিমাণে হয়ে থাকে তবে কখনো কখনো মাসিকের শুরুতে অথবা শেষে যাওয়া পুরানো রক্তের মতো বাদামি রঙেরও হতে পারে স্পটিং সাধারণত দুয়েক দিনের বেশি থাকে না এটি সাধারণত শঙ্কার কারণ না হলেও কিছু ক্ষেত্রে বিপদজনক হতে পারে অন্যদিকে ব্লিডিং বলতে অনেকে স্পটিং এর চেয়ে ভারী কিছুটা টকটকে লাল কিংবা কালচে বর্ণের রক্তপাত বুঝিয়ে থাকেতবে গর্ভাবস্থায় যোনিপথে ব্লিডিং অথবা স্পটিং যাই হোক না কেন দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে তলপেটে চাপ লাগা গর্ভধারণের শেষের দিকে যোনিপথে রক্ত গেলে তা প্রসবের লক্ষণ হতে পারে যদি গর্ভধারণের ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই প্রসববেদনা শুরু হয় তাহলে সেটাকে অকাল প্রসব বলে অকাল প্রসবের অন্যান্য লক্ষণ হতে পারেঃ– পানির মতো আঠালো অথবা রক্তমিশ্রিত স্রাব হওয়া– স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া অথবা মৃদু ব্যথা হওয়া– একটানা মৃদু ও চাপা ধরনের পিঠ ব্যথা হওয়া– তলপেটে মৃদু ব্যথার সাথে ডায়রিয়া হওয়া– নিয়মিত অথবা ঘন ঘন জরায়ুতে শক্ত টান অনুভব করা এটা অনেকসময় ব্যথা ছাড়াও হতে পারে– যোনিপথে যেকোনো পরিমাণে পানি ভাঙাঅকাল প্রসবের চিকিৎসা আপনার ও আপনার শিশুর অবস্থার ওপর নির্ভর করে গর্ভাবস্থায় স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগা সাধারণত গুরুতর কোনো সমস্যা নয় গর্ভাবস্থায় স্তনে স্বাভাবিক যে পরিবর্তনগুলো আসে তার জন্যই এই ব্যথা হয়ে থাকে তবে খুব বেশি ব্যথা হলে অথবা ব্যথা নিয়ে দুশ্চিন্তা হলে আপনি ডাক্তার দেখিয়ে নিতে পারেন গর্ভাবস্থায় অনেকের স্তনে ব্যথা হয় আবার অনেকের তেমন ব্যথা হয় না এর কোনোটিই সাধারণত অস্বাভাবিক নয় গর্ভাবস্থার লক্ষণগুলো একেকজনের ক্ষেত্রে একেকভাবে দেখা দিতে পারে কারও কারও ক্ষেত্রে এসময় স্তনে খুব বেশি পরিবর্তন আসে না তাদের ক্ষেত্রে তেমন ব্যথা নাও হতে পারে তবে গর্ভাবস্থায় স্তনে ব্যথা না হওয়া নিয়ে আপনার যদি সন্দেহ থাকে তাহলে ডাক্তার দেখিয়ে নিন গর্ভাবস্থায় স্তনে ব্যথা ছাড়াও বেশ কিছু পরিবর্তন আসে যেমন—– স্তনের আকার বড় হওয়া– স্তনের শিরাগুলো স্পষ্ট হয়ে ওঠা– স্তনের বোঁটা ও আশেপাশের চামড়ার রঙ গাঢ় হয়ে যাওয়া– স্তনের বোঁটা থেকে দুধের ন্যায় হলুদাভ তরল বেরিয়ে আসাএগুলো গর্ভাবস্থার স্বাভাবিক পরিবর্তন স্তনে ব্যথা হওয়া গর্ভাবস্থার অনেকগুলো লক্ষণের মধ্যে একটি গর্ভধারণের পর পরই এই লক্ষণ দেখা দিতে পারে তবে মাসিক শুরু হওয়ার আগে আগে শরীরে হরমোনের তারতম্যের কারণেও স্তনে ব্যথা হতে পারে তাই আপনার স্তনের ব্যথার কারণ সম্পর্কে ধারণা পেতে ঘরে বসেই প্রেগন্যান্সি টেস্ট করে নিতে পারেনউল্লেখ্য গর্ভাবস্থা ও মাসিক ছাড়াও অন্য কোনো কারণে স্তনে ব্যথা হতে পারে গর্ভবতী নারীর স্তন থেকে যেই ঘন আঠালো সাদা বা হলুদাভ তরল বের হয় তা হলো কোলোস্ট্রাম বা শালদুধ শিশু জন্মের পর প্রথম দুধ হিসেবে শালদুধ পান করে গর্ভাবস্থায় বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে স্তন হতে এ ধরনের তরল বের হওয়া পুরোপুরি স্বাভাবিক গর্ভাবস্থায় একেকজনের শরীরে একেকরকম পরিবর্তন আসে কতটুকু পরিবর্তন আসবে সেটিও মানুষভেদে ভিন্ন হয়ে থাকে কারও ক্ষেত্রে অনেক বেশি পরিবর্তন আসতে পারে আবার কারও ক্ষেত্রে তেমন কোনো লক্ষণীয় পরিবর্তন নাও আসতে পারে এর কোনোটাই সাধারণত অস্বাভাবিক না তবে স্তনে কোনো পরিবর্তন দেখা না যাওয়া নিয়ে চিন্তিত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন গর্ভাবস্থায় স্তনে দুধ জমে গিয়ে অনেকসময় চামড়ার নিচে পিণ্ড বা চাকার মতো অনুভব হতে পারে এ ছাড়া আগে থেকে কারও স্তনে চাকার মতো থাকলে সেগুলোও গর্ভাবস্থায় আকারে বড় হয়ে উঠতে পারে যেমন ফাইব্রোঅ্যাডেনোমা নামক অক্ষতিকর টিউমারএগুলো সাধারণত খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নয় তবে স্তনে যেকোনো ধরনের চাকা বা দলা দেখা দিলে ডাক্তারি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়াই শ্রেয় এতে করে স্তন ক্যান্সারের মতো গুরুতর রোগের সম্ভাবনা থাকলেও সেটি আগেভাগে নির্ণয় ও নিরাময় করা সম্ভব হতে পারে গর্ভাবস্থায় স্তনে হওয়া পরিবর্তনগুলো সাধারণত সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর পুরো সময়টা জুড়ে থাকতে পারে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করার পর ধীরে ধীরে স্তন আগের অবস্থায় ফেরত আসতে থাকে গর্ভাবস্থায় স্তনের চামড়ার নিচে শিরা দেখা যাওয়া সাধারণত কোনো গুরুতর সমস্যা নয় বরং এটি গর্ভাবস্থার একটি স্বাভাবিক শারীরিক পরিবর্তন তবে স্তনে কোনো অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করলে কিংবা শিরাগুলো নিয়ে কোনো কারণে দুশ্চিন্তা হলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন প্রিএক্লাম্পসিয়া গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ সংক্রান্ত একটি জটিলতা এর একটি কমন লক্ষণ হলো হঠাৎ শরীরে পানি আসা বা ফুলে যাওয়া৷ এসময়ে হাতে পানি আসলে বা হাত ফুলে গেলে নার্ভের ওপর চাপ পড়ে হাত ঝিনঝিন বা অবশ হয়ে আসার অনুভূতি হতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় হাত ঝিনঝিন করা বা অবশ হয়ে আসা প্রিএক্লাম্পসিয়ার একটি লক্ষণ হতে পারেউল্লেখ্য কেবল হাত ঝিনঝিন করা বা অবশ হওয়া মানেই যে আপনার প্রিএক্লাম্পসিয়া হয়েছে এমনটা নয়৷ তবে গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহ অথবা তার পরে হঠাৎ করেই হাতে পানি এসে হাত ফুলে গেলে সেটি শঙ্কার কারণ এমন ক্ষেত্রে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরই চোখে অস্পষ্ট বা ঝাপসা দেখার সমস্যা হয় এ সমস্যাটি একদম প্রসব পর্যন্ত ভোগাতে পারে কিন্তু চোখের এই সমস্যাটি নিয়ে অনেক মাই তেমন জানেন না গর্ভাবস্থায় অনেক মায়েরই চোখে অস্পষ্ট বা ঝাপসা দেখার সমস্যা হয় এ সমস্যাটি একদম প্রসব পর্যন্ত ভোগাতে পারে গর্ভাবস্থার অন্যান্য সমস্যাগুলো নিয়ে মায়েদের কিছুটা ধারণা থাকে কিন্তু চোখের এ সমস্যাটি নিয়ে অনেক মাই তেমন জানেন নাআবার গর্ভাবস্থায় চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা প্রিএক্লাম্পসিয়া ও মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস এর মতো জটিলতার কারণেও হতে পারে আগে থেকেই জেনে রাখলে গর্ভাবস্থায় এসব জটিলতা এড়িয়ে চলা যায় গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের পরিবর্তনের সাথে সাথে চোখেরও কিছু পরিবর্তন হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব পরিবর্তন স্বাভাবিক এবং প্রসবের পর পর আপনাআপনি সেরে যায় গর্ভাবস্থায় যেসব সাধারণ কারণে মায়েরা চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন সেগুলো হলো—হরমোনের পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায় এর মধ্যে প্রোজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে চোখের কর্নিয়ায় ফ্লুইড শিফট হতে পারে অর্থাৎ কর্নিয়ার পেছনে থাকা তরল বেরিয়ে আসতে পারে আর এই ফ্লুইড শিফটের কারণেই চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা দেখা দিতে পারে একই কারণে গর্ভাবস্থায় চোখের অভ্যন্তরীণ প্রেশারও স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা কমে যেতে পারে চোখের পানির পরিমাণ কমে যাওয়া আমাদের চোখে থাকা ল্যাক্রিমাল গ্রন্থি থেকে চোখের পানি তৈরি হয় গর্ভাবস্থায় এই গ্রন্থি থেকে চোখের পানি তৈরির হার কমে গেলে আপনার অস্বস্তি হতে পারে চোখ শুকিয়েও যেতে পারে এর ফলে আপনি চোখে ঝাপসা দেখতে পারেন কর্নিয়া পুরু হয়ে যাওয়া গর্ভাবস্থার শেষের দিকে হরমোনের কারণে শরীরে ফ্লুইড বা তরলের পরিমাণ বেড়ে যায় চোখের কর্নিয়ায় অতিরিক্ত তরল জমে আপনার চোখের কর্নিয়া পুরু হয়ে যেতে পারে প্রায় ১৪ শতাংশ মায়ের এ সমস্যা হতে পারে এ থেকে ঝাপসা দেখার সমস্যাও হয়ে থাকে দৃষ্টি ক্ষেত্রের পরিবর্তন আমাদের মস্তিষ্কের একটি গ্রন্থি হলো পিটুইটারি গ্রন্থি গর্ভাবস্থায় এই গ্রন্থি আকারে বৃদ্ধি পায় পিটুইটারি গ্রন্থির বৃদ্ধির ফলে আগে থেকে কারও পিটুইটারি অ্যাডেনোমা জাতীয় অক্ষতিকর টিউমার থাকলে সেটি এসময় আকারে আরও বাড়তে পারে যার ফলে গর্ভবতী মায়েদের দৃষ্টির সীমা পরিবর্তিত হতে পারে দৃষ্টি ঝাপসা হয়ে আসতে পারে ও মাথাব্যথাসহ অন্যান্য সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় কারও এ জাতীয় লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে তবে এটি সাধারণত খুব বেশি দুশ্চিন্তার কারণ নয় কারণ এ ধরণের টিউমার বা বৃদ্ধি সাধারণত প্রসবের পর নিজে থেকেই কমে আসে ফলে প্রসবের পর সাধারণত দৃষ্টিশক্তি পূর্বের ন্যায় স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে গর্ভাবস্থায় আপনার উচ্চ রক্তচাপ উচ্চ ব্লাড গ্লুকোজ থাকলে এবং এসবের পাশাপাশি চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা হলে সেটি গর্ভাবস্থার বিভিন্ন জটিলতা নির্দেশ করে এসব ক্ষেত্রে যেকোনো পরিবর্তন নিয়েই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন গর্ভাবস্থায় দৃষ্টি ঝাপসা হওয়ার কারণ হতে পারে এমন দুটি জটিলতা হলো—প্রিএক্লাম্পসিয়াপ্রিএক্লাম্পসিয়া একটি উচ্চ রক্তচাপ জনিত জটিলতা এর একটি লক্ষণ হলো চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টি ঘোলা হয়ে যাওয়া বা চোখের সামনে আলোর ঝলকের মতো দেখতে পাওয়াআপনার চোখে ঝাপসা দেখার সাথে নিচের লক্ষণগুলো দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন—1 প্রচণ্ড মাথাব্যথা যা সাধারণ পেইনকিলার সেবনেও যায় না2 প্রচণ্ড বুক জ্বালাপোড়া যা এন্টাসিড খেলে সারে না3 পাঁজরের হাড়ের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথা4 খুব খারাপ বা অসুস্থ অনুভব করা5 শরীরের বিভিন্ন জায়গা (যেমন পায়ের পাতা গোড়ালি মুখ ও হাত) হঠাৎ পানি জমে ফুলে উঠতে থাকাআপনার আগে থেকেই উচ্চ রক্তচাপ থাকলে আপনার প্রিএক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে এক্ষেত্রে নিচের সহজ উপায়গুলো অবলম্বন করে প্রিএক্লাম্পসিয়ার ঝুঁকি এড়িয়ে চলুন—গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন6 চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন ব্লাড প্রেশার বা উচ্চ রক্তচাপের ঔষধ সেবন করুন7 উচ্চ রক্তচাপ জনিত জটিলতা এড়িয়ে চলতে নিয়মিত চোখের পরীক্ষা করানতবে প্রিএক্লাম্পসিয়ার কারণে বেশি জটিল অবস্থার সৃষ্টি হলে এসময় চিকিৎসক আপনার প্রসবের সূত্রপাত করাতে পারেন অথবা প্রয়োজনে সরাসরি সিজারিয়ান সেকশন করার সিদ্ধান্ত নিতে পারেনমাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিসমাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস গর্ভাবস্থার একটি পরিচিত সমস্যা মাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস থাকাকালীন চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা শরীরের গ্লুকোজ এর মাত্রা বেড়ে গেছে এমনটা নির্দেশ করেমাতৃত্বকালীন ডায়াবেটিস এর জটিলতা থেকে চোখের রেটিনার রক্তনালী ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে এর ফলে চিরদিনের জন্য দৃষ্টি হারিয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে তাই আপনার গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে প্রতি ত্রৈমাসিকে চোখের রক্তনালী পরীক্ষা করানএর পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলোর দিকে বিশেষভাবে খেয়াল রাখুন—1 তীব্রভাবে ঝাপসা দেখা2 ডাবল ভিশন বা যেকোনো কিছুকে দুটি করে দেখা3 সাময়িকভাবে দৃষ্টি শক্তি হারিয়ে ফেলা আপনার গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস থাকলে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলার মাধ্যমে আপনি অনেকটা স্বস্তিতে থাকতে পারেন—প্রক্রিয়াজাত খাবার অধিক চর্বি ও চিনিযুক্ত খাবার এড়িয়ে চলুন4 প্রোটিন ফ্যাট কার্বোহাইড্রেট সমৃদ্ধ সুষম খাবার খান5 নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করুন6 আপনার অতিরিক্ত গ্লুকোজ নিয়ন্ত্রণে চিকিৎসক আপনাকে ইনসুলিন দিলে সেটি নিয়মিত নিনঅন্যান্য জটিলতাআপনার যদি আগে থেকেই নিচের রোগগুলো থাকে সেক্ষেত্রে চোখের ঝাপসা দেখার সমস্যা এ রোগগুলোর আরও খারাপ হয়ে যাওয়া বুঝায়—ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি7 গ্রেভস ডিজিজ 8 ইডিওপ্যাথিক ইন্ট্রাক্র্যানিয়াল হাইপারটেনশন9 মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস 10 বিভিন্ন টিউমার যেমন পিটুইটারি এডেনোমা11 ইউভাইটিস তাই আগে থেকে এসব রোগ থাকলে এবং গর্ভাবস্থায় চোখে ঝাপসা দেখতে পেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক কারণে চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যার জন্য আপনার তেমন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই তবে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চললে আপনি চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা অনেকটা এড়িয়ে চলতে পারেন১ চোখকে বিশ্রাম দিনআপনি সারাদিন কম্পিউটার স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে আপনার চোখের ক্লান্তি থেকে ঝাপসা দেখবেন দীর্ঘ সময় ধরে স্ক্রিনে কাজ করলে চোখের বিরতি নিন এক্ষেত্রে প্রতি ২০ মিনিট পর পর আপনার থেকে ২০ ফুট দূরে থাকা কোনো বস্তুর দিকে ২০ সেকেন্ড ধরে তাকিয়ে থাকুন এ ছাড়াও স্ক্রিন গ্লাস এন্টি গ্লেয়ার স্ক্রিন—এসব ব্যবহার করতে পারেন স্ক্রিন চোখের লেভেল থেকে নিচে আর দুই ফিট দূরে রাখুন ২ চোখের ড্রপ ব্যবহার করুন আপনার চোখের পানি শুকিয়ে যাবার কারণে চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা হলে চিকিৎসক আপনাকে গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন ড্রপ দিতে পারেন আর্টিফিশিয়াল টিয়ার নামে পরিচিত এসব ড্রপ ব্যবহারের আগে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে৩ লেন্সের ব্যবহার এড়িয়ে চলুনঅনেক মা চোখের সমস্যার জন্য আগে থেকেই কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করতে পারেন গর্ভাবস্থায় এসব কন্টাক্ট লেন্স চোখের জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে বিশেষ করে আপনার যদি চোখ শুকিয়ে যাওয়ার সমস্যা থাকে গর্ভাবস্থায় কন্টাক্ট লেন্স এর ব্যবহার এড়িয়ে চলুন লেন্স এর পরিবর্তে চশমা ব্যবহার করুন৪ চশমার পাওয়ার পরিবর্তন থেকে বিরত থাকুনঅনেক মা যারা আগে থেকেই চশমা পরেন তাদের গর্ভাবস্থায় চশমার পাওয়ার এর পরিবর্তন হতে পারে এসব পরিবর্তন অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সাময়িক এক্ষেত্রে চশমার পাওয়ার পরিবর্তন থেকে বিরত থাকুন গর্ভাবস্থায় শরীরের পরিবর্তনের কারণে হওয়া চোখে ঝাপসা দেখার সমস্যা প্রসবের পর থেকেই সেরে ওঠা শুরু করেযদি প্রসবের পরও দীর্ঘদিন আপনার সমস্যাটি থাকে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন তবে চোখের যেকোনো পরিবর্তনের জন্য অন্তত ৬৯ মাস অপেক্ষা করা উচিত কেননা প্রসবের পর এসব সমস্যা সেরে উঠতে কিছুটা সময় লাগে সাধারণত গর্ভাবস্থাতে আপনার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময়ের মতোই থাকে তবে অনেক মাই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগার কথা বলে থাকেন এ ছাড়া আমাদের দেশের আবহাওয়ায় গরমের মধ্যে গর্ভধারণ করা কিছুটা অস্বস্তিকর হতে পারেসাধারণত গর্ভাবস্থাতে আপনার শরীরের তাপমাত্রা স্বাভাবিক সময়ের মতোই থাকে তবে অনেক মাই গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগার কথা বলে থাকেন এ ছাড়া আমাদের দেশের আবহাওয়ায় গরমের মধ্যে গর্ভধারণ করা কিছুটা অস্বস্তিকর হতে পারেঅতিরিক্ত গরমে পানিশূন্যতা থেকে হিট এক্সোশন হিট স্ট্রোক এর মতো জটিলতাও হবার সম্ভাবনা থাকে গর্ভাবস্থায় গরম লাগলে কীভাবে সহজে স্বস্তিতে থাকবেন এবং নিজেকে সুরক্ষিত রাখবেন—তা এই আর্টিকেলটিতে তুলে ধরা হয়েছে সাধারণত আমাদের যখন গরম লাগে তখন আমাদের শরীর ঘামের মাধ্যমে ঠান্ডা হওয়ার চেষ্টা করে কিন্তু কোনো কারণে শরীরে পানির ঘাটতি থাকলে ঘাম কম তৈরি হয় ফলে ঘামের মাধ্যমে অতিরিক্ত তাপ বের করে দেওয়া সম্ভব হয় না গর্ভাবস্থায় পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে এর ফলে ঘামের মাধ্যমে শরীর ঠান্ডা হতে পারে না এবং স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি গরম লাগেআবার গর্ভাবস্থায় আপনি নিজের পাশাপাশি গর্ভের শিশুকেও বহন করেন এতে করে আপনার শরীরের সব অঙ্গকেই স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত কাজ করতে হয় যার ফলে আপনার শরীরে মেটাবোলিজম বা খাদ্য হজমের হারও বাড়ে উচ্চ মেটাবলিক হারের ফলে শরীরে বাড়তি তাপ উৎপন্ন হয় এ কারণেও অতিরিক্ত গরম লাগতে পারেপাশাপাশি গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে বিভিন্ন হরমোন এর মাত্রায় তারতম্য ঘটে অতিরিক্ত হরমোনও গরম লাগার পেছনে দায়ী হতে পারে এ ছাড়াও আপনার শিশুর শরীরে পুষ্টি উপাদান সরবরাহের জন্য আপনার শরীরের রক্ত চলাচল বৃদ্ধি পায় অতিরিক্ত রক্ত প্রবাহ থেকেও অতিরিক্ত গরম লাগতে পারে গর্ভাবস্থায় যেকোনো মায়েরই অতিরিক্ত গরম লাগতে পারে তবে কিছু ক্ষেত্রে আপনার সমস্যা বেশি হতে পারে যেমন—আপনার যদি আগে থেকেই জটিল ও দীর্ঘ মেয়াদি কোনো অসুখ থাকে যেমন ডায়াবেটিস হার্ট ও কিডনির রোগ মানসিক সমস্যা আপনি যদি নিয়মিত ঘরের বাইরে কাজ করেন আপনি যদি বিল্ডিং এর সবচেয়ে উপরের তলায় থাকেন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের তাপমাত্রা যদি ৩৯° সেন্টিগ্রেড বা ১০২২° ফারেনহাইটের ওপরে হয়ে যায় সেক্ষেত্রে আপনার নিচের সমস্যাগুলো দেখা যেতে পারে—হিট ক্র্যাম্প আপনি যদি গরমের মধ্যে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম করে থাকেন সেক্ষেত্রে আপনার শরীরে এক ধরনের খিঁচুনি হতে পারে সাধারণত ব্যায়ামের ফলে যেই অতিরিক্ত ঘাম হয় তার সাথে শরীরের লবণ ও পানি বেশি পরিমাণে বের হয়ে গেলে এমনটা হয়ে থাকে এর ফলে আপনার হাত পা ও পেট ব্যথা হতে পারেহিট ক্র্যাম্প হলে করণীয়কাজ বা ব্যায়াম বন্ধ করে ঠান্ডা জায়গায় সরে আসুন পর্যাপ্ত পানি পান করুন হিট ক্র্যাম্পের ব্যথা সেরে যাওয়ার আগ পর্যন্ত শারীরিক শ্রম করা থেকে বিরত থাকুন যখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন১ ঘন্টার বেশি সময় ক্র্যাম্প থাকলে আপনার খাবারে সোডিয়াম লবণের ঘাটতি থাকলে এবং এর সাথে হিট ক্র্যাম্প হলে হৃদরোগের সমস্যা থাকলে ডিহাইড্রেশনে শরীর গরম হয়ে গেলে ঘাম বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে দেহ থেকে যে পরিমাণ পানি বের হয়ে যায় সে তুলনায় আপনার পানি গ্রহণের পরিমাণ কম হলে আপনার শরীরে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন দেখা যেতে পারেপানিশূন্যতা হলে আপনার শরীরের স্বাভাবিক কাজকর্ম ব্যাহত হতে পারে এমনকি আপনার প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল দিয়ে রক্ত প্রবাহ কমে যেতে পারে ডিহাইড্রেশনের ফলে আপনার ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন নামের প্রসবের প্রস্তুতিমূলক সংকোচন শুরু হয়ে যেতে পারে পানিশূন্যতার কারণে আপনি দাঁড়াতে গেলে মাথা ঘুরিয়ে পড়েও যেতে পারেন আপনার ডিহাইড্রেশন হয়েছে কীভাবে বুঝবেন—1 অনেক বেশি তৃষ্ণার্ত বোধ করবেন2 গাঢ় হলুদ ও তীব্র গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হবে3 মাথা ঘুরাবে4 ক্লান্তি বোধ করবেন5 হার্টবিট দ্রুত ও জোরালোভাবে অনুভব করবেন6 মুখ ঠোঁট শুকিয়ে যাবে7 চোখ কোটরে ঢুকে যাবে8 দিনে চারবারের কম ও খুবই অল্প পরিমাণে প্রস্রাব হবেহাত পা ফুলে যাওয়াগরমের মধ্যে আপনার শরীরে পানিশূন্যতা দেখা দিলে আপনার শরীর নিজ থেকে পানি ধরে রাখার চেষ্টা করে এই অতিরিক্ত পানি শরীরের নিচের দিকের অংশগুলোতে জমা হয় বিশেষ করে যখন আপনি অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকেন এর ফলে আপনার হাতপা গোড়ালি পায়ের পাতা ফুলে যেতে পারে—একে ডাক্তারি ভাষায় ইডেমা বা সোয়েলিং বলেগর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকভাবেই হাতপায়ে পানি জমার প্রবণতা থাকে অতিরিক্ত গরমের কারণে তা আরও বেড়ে যায়হাতপা ফুলে যাওয়া রোধে করণীয়1 এক নাগাড়ে অনেকক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকা এড়িয়ে চলুন2 আরামদায়ক জুতা পরুন3 অনেক বেশি পানি পান করুনএসবের পাশাপাশি নিচের ব্যায়ামটিও করতে পারেন—1 আপনার পা বাঁকিয়ে ও সোজা করে ৩০ বার উঠানামা করবেন2 প্রত্যেক পা ৮ বার করে বৃত্তাকারে ঘুরাবেনহিট র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি বা ঘামাচিগর্ভাবস্থায় গরম থেকে আপনার ছোটো ছোটো ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ হতে পারে এসব ফুসকুড়ি গুচ্ছাকারে থাকে এবং অনেকটা ব্রণ বা ছোটো ফোস্কার মতো দেখায় কাঁধ বুক বগল কুঁচকিতে সাধারণত এসব ফুসকুড়ি বা ঘামাচি বেশি হয়ে থাকেহিট র‍্যাশ হলে করণীয় 1 ঠান্ডা জায়গায় থাকুন 2 ফুসকুড়িগুলোকে শুকনো রাখুন3 ফুসকুড়ি কিংবা ঘামাচি থেকে স্বস্তি পেতে পাউডার লাগাতে পারেনমেলাসমাএটি গর্ভাবস্থায় গরম থেকে হওয়া ত্বকের পরিচিত একটি সমস্যা এর ফলে ত্বকের কিছু কিছু জায়গায় বাদামী অথবা ধূসর রঙের ছোপ ছোপ দাগ পড়ে বিশেষত মুখে এ ধরনের সমস্যা হয় প্রতি দুই জনের মধ্যে একজন গর্ভবতীর এ ধরনের সমস্যা হতে পারেমেলাসমা প্রতিরোধে করণীয়1 সূর্যের সরাসরি তাপ বা আল্ট্রাভায়োলেট রেডিয়েশন যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন2 বাইরে বের হলে টুপি সানগ্লাস ভালো SPF যুক্ত সানস্ক্রিন লোশন ব্যবহার করুনগর্ভাবস্থায় মেলাসমা নিয়ে চিন্তিত হবেন না গর্ভাবস্থার কারণে আপনার এ সমস্যা হলে প্রসবের কয়েক মাসের মধ্যেই সাধারণত এটি সেরে যাবে হিট এক্সোশনঅতিরিক্ত গরম ও আর্দ্র আবহাওয়ায় থাকলে আপনার হিট এক্সোশন হতে পারে এটি এক ধরনের হাইপারথার্মিয়া বা উচ্চ তাপমাত্রা জনিত সমস্যা দ্রুত চিকিৎসা করা না হলে এটি হিট স্ট্রোকে পরিণত হতে পারে হিট এক্সোশন এর ক্ষেত্রে যদি আধা ঘন্টা বা এক ঘন্টার মধ্যে আপনি সুস্থ বোধ করেন সেক্ষেত্রে আপনার বিশেষ কোনো চিকিৎসার দরকার হবে না তবে এক ঘন্টার মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন হিট এক্সোশনে আপনার নিচের লক্ষণগুলি দেখা দিতে পারে —1 তীব্র ঘাম হওয়া2 চামড়া ফ্যাকাসে হয়ে যাওয়া3 মাংসপেশিতে ব্যথা হওয়া4 মাথা ব্যথা কিংবা মাথা ঘুরানো5 ক্লান্তিভাব ও দুর্বল লাগাবমি বমি ভাব কিংবা বমি হওয়া6 জ্ঞান হারিয়ে ফেলাহিট এক্সোশন হলে করণীয়গরম জায়গা থেকে ঠান্ডা জায়গায় সরে আসুন7 পানি পান করুন8 অতিরিক্ত কাপড় খুলে ফেলুন9 ঠান্ডা ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছুন10 সম্ভব হলে বাথটাবে ঠান্ডা পানিতে বসে থাকুন11 এক ঘন্টার মধ্যে অবস্থার উন্নতি না হলে নিকটস্থ হাসপাতালে যান বা চিকিৎসকের পরামর্শ নিন হিট স্ট্রোকহিট স্ট্রোক উচ্চ তাপমাত্রাজনিত একটি মারাত্মক জটিলতা এতে শরীর তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণের ক্ষমতা হারায় ফলে দ্রুত শরীরের তাপমাত্রা বাড়তে থাকে এমনকি ১০১৫ মিনিটের মধ্যে তাপমাত্রা ১০৬° কিংবা আরও বেশি বাড়তে পারে৷ জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা না হলে এতে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে হিট স্ট্রোকের বিপদচিহ্ননিচের লক্ষণগুলি দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন —1 শরীরের তাপমাত্রা ১০৩° ফারেনহাইটের বেশি হলে2 অনেক বেশি গরমেও ঘাম না হলে এবং শরীরের চামড়া উত্তপ্ত শুষ্ক ও লালচে হয়ে থাকলে3 পালস বা নাড়ি স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত ও জোরালোভাবে অনুভূত হলে4 দপদপ করে মাথাব্যথা হতে থাকলে5 মাথা ঘুরালে6 বমিভাব থাকলে7 আশেপাশে কী হচ্ছে কিছু বুঝতে না পারলে কিংবা অসংলগ্ন কথাবার্তা বা আচরণ করলে8 জ্ঞান হারালেগর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগার পাশাপাশি এসব লক্ষণের যেকোনোটা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে হিট স্ট্রোকের ফলে আপনার হার্ট ব্রেইন কিডনি মাংসপেশির সমস্যা হতে পারে তাই এসব লক্ষণ দেখা দিলে অবহেলা করা যাবে নাহিট স্ট্রোক হলে প্রাথমিক করণীয় আক্রান্ত ব্যক্তিকে ছায়াযুক্ত ঠান্ডা জায়গায় নিয়ে আসুন যত দ্রুত সম্ভব তাকে ঠান্ডা করার চেষ্টা করুন গায়ে ঠান্ডা পানি ঢালুন কিংবা ঠান্ডা কাপড় দিয়ে তাকে জড়িয়ে রাখুন থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মাপতে থাকুন তাপমাত্রা ১০১১০২° ফারেনহাইটএ না পৌঁছানো পর্যন্ত ঠান্ডা করার চেষ্টা চালিয়ে যান ইতোমধ্যে যতদ্রুত সম্ভব আক্রান্ত ব্যক্তিকে নিকটবর্তী হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে আসুন কিংবা ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান নিচের কিছু সহজ পরামর্শ মেনে চলার মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় ওভারহিটিং হওয়া থেকে স্বস্তি পেতে পারেন—১ পর্যাপ্ত পানি পান করুন একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি আপনার ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন প্রয়োজনে ঘরের বাইরে গেলে পানির বোতল সাথে নিন২ নিয়মিত গোসল করুন গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগলে নিয়মিত গোসল করুন প্রয়োজনে ভেজা কাপড় দিয়ে শরীর মুছুন গোসলের পানির তাপমাত্রা যেন ৩২° সেন্টিগ্রেড এর বেশি না হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে৩ আরামদায়ক পোশাক পরুন গরমের সময় যেন বাতাস চলাচল করতে পারে এমন ঢিলেঢালা পোশাক পরুন সুতি ও লিনেন এর কাপড় এসময় আরামদায়ক হালকা রঙের পোশাক সূর্যের আলো কম শোষণ করে গর্ভাবস্থায় হালকা রঙের পোশাক পরুন এবং কালো বা গাঢ় রঙের পোশাক এড়িয়ে চলুন৪ খাবার গ্রহণে সতর্ক হোন গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরম লাগলে হালকা খাবার খান ফল সালাদ জাতীয় খাবার এবং সহজে পরিপাক হয় এমন খাবার খান যেসব খাবারে পানির পরিমাণ বেশি (যেমন তরমুজ) এমন ফলমূল খেতে পারেন৫ কাজ গুছিয়ে নিন গর্ভাবস্থায় যতটুকু সম্ভব বাইরের কাজ এড়িয়ে চলুন রোদের মধ্যে কাজ করতে হলে কিছুক্ষণ পর পর ছায়ায় বিশ্রাম নিন এবং পানি পান করুন গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত গরমে ব্যায়াম বা ভারী কাজকর্ম এড়িয়ে চলুন৬ কড়া রোদ এড়িয়ে চলুন সকাল ১০টা–১১টা থেকে বিকেল ২টা–৩টা পর্যন্ত কড়া রোদ থাকে প্রয়োজন ব্যতীত এসময় ঘরের বাইরে বের হওয়া এড়িয়ে চলুন ঘরে থাকা অবস্থায় বাইরে খুব বেশি কড়া রোদ থাকলে পর্দা টেনে দিন৭ রোদ প্রতিরোধী দ্রব্য ব্যবহার করুন কড়া রোদে বাইরে বের হতে হলে ছাতা ব্যবহার করুন এবং ছায়াযুক্ত স্থানে থাকুন ছাতা না থাকলে হ্যাট বা টুপি ব্যবহার করুন এবং চোখে সানগ্লাস পরুন চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন সানস্ক্রিন (SPF 30+) ব্যবহার করুন৮ প্রস্রাবের দিকে নজর দিন আমাদের শরীরে পানিশূন্যতা দেখা গেলে কিডনি ঘন গাঢ় রঙের কম পরিমাণে প্রস্রাব তৈরি করে অর্থাৎ কম পরিমাণে ও গাঢ় রঙের প্রস্রাব আপনার শরীরে পানিশূন্যতা নির্দেশ করে তাই এসময় প্রস্রাবের দিকেও খেয়াল রাখুন গর্ভধারণের পর থেকে আপনার খুবই সাধারণ বিষয় ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে যেমন চাবি কোথায় রেখেছেন মনে করতে না পারা চুলা বন্ধ করে এসেছিলেন কি না তা নিয়ে সংশয় হওয়া নিজের ফোন নাম্বার মনে করতে না পারা কিংবা এক জায়গার জিনিস অন্য জায়গায় ফেলে আসাগর্ভধারণের পর থেকে আপনার খুবই সাধারণ বিষয় ভুলে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিতে পারে যেমন চাবি কোথায় রেখেছেন মনে করতে না পারা চুলা বন্ধ করে এসেছিলেন কি না তা নিয়ে সংশয় হওয়া নিজের ফোন নাম্বার মনে করতে না পারা কিংবা এক জায়গার জিনিস অন্য জায়গায় ফেলে আসাএকই সাথে আপনি কাজে বা কথার মাঝে মনোযোগ ধরে রাখতে পারছেন না—এরকম মনোযোগহীনতাও দেখা দিতে পারে সবমিলিয়ে আপনার দৈনন্দিন জীবনের চিন্তা ভাবনা কিছুটা ঘোলাটে কিংবা অগোছালো হয়ে আসতে পারেগর্ভাবস্থায় অনেক নারী এই ধরনের সমস্যায় ভুগে থাকেন গবেষণায় দেখা গিয়েছে গর্ভাবস্থা আপনার শরীরের অন্যান্য অংশের মতো আপনার মস্তিষ্কেও প্রভাব ফেলে থাকে আর এর ফলেই সাধারণত এমনটা হয়তাই এরকম হলে হতাশ হবার কোনো কারণ নেই বরং এটি গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন কিছু সাধারণ বিষয় মেনে চললে আপনি এই পরিবর্তনের সাথে সহজে মানিয়ে নিতে পারবেন গর্ভাবস্থার যেকোনো সময়ে আপনার চিন্তা ভাবনা এলোমেলো বা ঘোলাটে হওয়া নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিস খুঁজে না পাওয়া নানান বিষয় ভুলে যাওয়া—এরকম সমস্যা হতে পারে তবে গবেষণায় দেখা গেছে গর্ভকালের দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে এটি বেশি হয় তবে সন্তান প্রসবের পরেও কয়েক মাস এমনটা হতে পারে ছোটো ছোটো বিষয় মনে রাখতে না পারা নিত্য দিনের কাজকর্মে মনোযোগ না থাকা চিন্তা ভাবনায় ঘোলাটে ভাব থাকা—এই সমস্যাগুলো কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি না করলেও বিরক্তি বা হতাশা তৈরি করতে পারে তাই যথাসাধ্য চেষ্টা করুন এই প্রভাবগুলোর সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়ার এজন্য আপনি যা যা করতে পারেন—১ দুশ্চিন্তামুক্ত থাকুন এই সমস্যাগুলোকে আপনি আপনার অক্ষমতা বা গুরুতর কোনো সমস্যা মনে না করে স্বাভাবিক পরিবর্তন হিসেবে দেখুন নিজেকে চাপমুক্ত রাখুন মানসিক চাপ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলুন২ দরকারি বিষয়গুলো লিখে রাখুন কোনো প্রয়োজনীয় তথ্য ভুলে যাওয়ার ফলে যাতে সমস্যায় পড়তে না হয় সেজন্য এই তথ্যগুলো কাগজে লিখে রাখুন বাজারের লিস্ট তৈরি করে বাজার করুন ওষুধপত্র ঠিক মতো খাওয়া হচ্ছে কি না তা খেয়াল রাখার জন্য একটি ফর্দ তৈরি করতে পারেনকাগজকলমে না লিখে আপনি আপনার মুঠোফোনও ব্যবহার করতে পারেন যেভাবে সুবিধা হয় সেভাবে আপনার প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো রেকর্ড করে রাখুন৩ একটি ব্যাকআপ সিস্টেম তৈরি করুন যেসব বিষয়ে পরিবার পরিজনের সাহায্য নেওয়া যায় সেসব কাজে তাদের সাহায্য নিন নিজের উপর বাড়তি চাপ পড়তে দিবেন না এবং এই বিষয়ে পরিবারের অন্যদের আগে থেকেই সচেতন রাখুন৪ নিজেকে প্রফুল্ল রাখুন ভুলে যাওয়া মনোযোগ হারানো এসব বিষয়ে হতাশ না হয়ে সহজ সাবলীলভাবে বিষয়গুলো গ্রহণ করুন বাড়ির অন্য সদস্যদের সাথে এই বিষয়গুলো নিয়ে রসিকতা করার অভ্যাস তৈরি করতে পারেন এর ফলে বিরক্তি তৈরি না হয়ে নিজেকে প্রফুল্ল রাখার একটি উপায় বের হতে পারে৫ কোলিনযুক্ত খাবার খেতে পারেন কোলিন একটি উপাদান যা ভিটামিন বা মিনারেলের থেকে আলাদা তবে তাদের মতোই শরীরের নানান ক্রিয়াবিক্রিয়ায় সাহায্য করে গবেষণায় দেখা গেছে যেসব খাবারে বেশি পরিমাণে কোলিন রয়েছে তা আপনার ও আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের জন্য উপকারী হতে পারেগর্ভাবস্থায় রক্তে কোলিনের অভাব থাকলে গর্ভের শিশুর নিউরাল টিউব ডিফেক্ট নামক জটিলতা দেখা দিতে পারে—এমন কিছু প্রমাণ পাওয়া গেছে যদিও এখনো তা নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত নয় কলিজা ডিম গরুর মাংস –এসব খাবার কোলিনের ভালো উৎস তবে কলিজায় কোলিন ছাড়াও উচ্চমাত্রায় ভিটামিন এ থাকে আর গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনের অতিরিক্ত ভিটামিন এ সেবন গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে বলে গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে তাই গর্ভাবস্থায় সাধারণত কলিজা খেতে নিরুৎসাহিত করা হয় তবে গর্ভাবস্থায় মাঝেসাঝে (যেমন সপ্তাহে একবার অথবা তার চেয়েও কম) ৫০–৭০ গ্রাম রান্না করা কলিজা খাওয়া গর্ভের শিশুর জন্য তেমন ঝুঁকির কারণ নয় কলিজা গর্ভাবস্থার জন্য গুরুত্বপূর্ণ ফলিক এসিড ও আয়রনের ভালো উৎস এ বিষয়ে আরোও বিস্তারিত জানতে আমাদের এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন গর্ভাবস্থায় ভিটামিন এ৬ ওমেগা ৩ যুক্ত খাবার খেতে পারেন এসব খাবার আপনার ও আপনার সন্তানের মস্তিষ্কের সুস্থতা এবং আপনার সন্তানের স্বাভাবিক বেড়ে ওঠায় সাহায্য করে ওমেগা ৩ যুক্ত খাবারের মধ্যে আছে মাছ – বিশেষ করে সামুদ্রিক মাছ বাদাম মিষ্টিকুমড়ার বিচি সয়াবিন তেল এবং বাজারে মজুদ কৃত্রিমভাবে ওমেগা ৩ যুক্ত ডিম দুধ দই ও জুস৭ নিজেকে প্রস্তুত রাখুন গর্ভাবস্থায় যেমনি আপনার মনোযোগ ও স্মৃতিশক্তি নিয়ে সমস্যা হয়েছে তেমনি সন্তানের জন্ম হওয়ার পরও এই সমস্যাগুলো দেখা দিতে পারে এর জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকুন গর্ভকালে কেন ও কীভাবে এই পরিবর্তনগুলো হয় তা নিয়ে আরও অনেক কিছু জানার ও বুঝার থাকলেও এর পিছনে কিছু কারণ দাঁড় করানো সম্ভব হয়েছে যেমন—১ গর্ভাবস্থার হরমোন আপনার শরীরের কিছু স্বাভাবিক হরমোন গর্ভকালে অনেক বেড়ে যায় এই হরমোনগুলোই শরীরের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন প্রভাব ফেলে এবং গর্ভাবস্থার বিভিন্ন লক্ষণ ও সমস্যার জন্য দায়ী ধারণা করা হয় এই হরমোনগুলোর প্রভাবে আপনার স্মৃতিশক্তি কিছুটা দুর্বল হতে পারে এবং মনমেজাজ বিক্ষিপ্ত থাকতে পারে২ পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব যদিও ধারণা করা হচ্ছে গর্ভাবস্থা আপনার মস্তিষ্কে নানান পরিবর্তন আনে তবে দৈনন্দিন জীবনের কিছু পরিবর্তনও আপনার ভুলে যাওয়া অথবা মনোযোগ হারানোর জন্য দায়ী থাকতে পারে বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় নানান কারণে আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটতে পারে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুম না হওয়ার কারণে আপনার কাজকর্মে দক্ষতা কিছুটা কমে আসতে পারে ঘুম কম হওয়ার কারণে আপনার মনমেজাজ খারাপ থাকার সম্ভাবনাও বেশি থাকে সন্তানের যত্ন নেওয়ার জন্য সন্তান ভূমিষ্ঠ হবার পরও ঘুমের এরকম সমস্যা থাকতে পারে৩ দুশ্চিন্তা ও মানসিক চাপ অনেক গর্ভবতী নারীর নতুন মাতৃত্ব নতুন সন্তানের ভূমিষ্ঠ হওয়া—এরকম নানান বিষয়ে উৎকণ্ঠা থাকে গর্ভাবস্থার পরও এরকম মানসিক চাপ থেকে যেতে পারে এর প্রভাবে আপনার মনোযোগ হারানোর প্রবণতা ভুলে যাওয়া কাজকর্মে আগ্রহ হারানো—এরকম নানান সমস্যা দেখা দিতে পারে হঠাৎ হাত থেকে কিছু ফসকে যাওয়া অথবা অসচেতনভাবে হোচট খাওয়া—এ ধরনের বেখেয়ালি ঘটনাগুলো অনেক গর্ভবতী নারীরই হয়ে থাকে প্রথম দিকে অল্প থাকলেও গর্ভাবস্থার শেষ দিকে বিশেষ করে শেষ তিন মাসে এ ধরনের সমস্যাগুলো অনেকের জন্যই ভোগান্তি তৈরি করতে পারে কিছু সহজ উপায় মেনে চললে এ সমস্যাগুলো অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায়হঠাৎ হাত থেকে কিছু ফসকে যাওয়া অথবা অসচেতনভাবে হোচট খাওয়া—এ ধরনের বেখেয়ালি ঘটনাগুলো অনেক গর্ভবতী নারীরই হয়ে থাকে প্রথম দিকে অল্প থাকলেও গর্ভাবস্থার শেষ দিকে বিশেষ করে শেষ তিন মাসে এ ধরনের সমস্যাগুলো অনেকের জন্যই ভোগান্তি তৈরি করতে পারে কিছু সহজ উপায় মেনে চললে এ সমস্যাগুলো অনেকটাই প্রতিরোধ করা যায় গর্ভকালীন সময়ে আপনার মধ্যে শারীরিক ও মানসিক কারণে নানান রকম পরিবর্তন হয় অনেকসময় এসব পরিবর্তন বেখেয়ালি বা ক্লামজি বোধের কারণ হয়ে দাঁড়ায় এরকম কিছু পরিবর্তন হচ্ছে—অতিরিক্ত ওজন গর্ভাবস্থার অতিরিক্ত ওজন আপনার জন্য ক্লান্তিদায়ক হতে পারে এসময়ে আপনার স্তন ও পেটের আকার বড় হতে থাকার কারণে আপনার শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে কষ্ট হতে পারে পেটের আকার বড় হয়ে যাওয়ার কারণে অনেকক্ষেত্রে হাঁটার সময় পা নাও দেখা যেতে পারে ফলে অসাবধানতাবশত দুর্ঘটনার ঝুঁকি বাড়তে পারে শারীরিক পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনের কারণে একটি হাড়ের সাথে আরেকটি হাড় সংযোগকারী লিগামেন্ট ঢিলা হয়ে হাড়গুলোর সন্ধি বা জয়েন্টে কিছু পরিবর্তন আসতে পারে এ ছাড়া এসময়ে শরীরে পানি জমে হাতপা ফুলে যেতে পারে এসব কারণেও এসময় শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখতে কষ্ট হতে পারে ভুলোমনা হয়ে যাওয়া গর্ভাবস্থায় ভুলে যাওয়া একটি কমন উপসর্গ কোথায় কোন জিনিস আছে তা মনে করতে না পারার কারণেও হবু মায়েরা অনেকসময় বেখেয়ালি হয়ে যান দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন গর্ভকালীন সময়ে কখনো কখনো চোখের দৃষ্টিশক্তির পরিবর্তন আসার কারণেও আপনি অসাবধানতাবশত পড়ে যেতে পারেন মাথা ঘুরানো গর্ভাবস্থায় মাথা ঘুরানো কমন একটি উপসর্গ কখনো কখনো গর্ভাবস্থায় মাথা ঘুরানোর কারণে ভারসাম্য হারিয়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকেএগুলো ছাড়াও জীবনযাত্রার মান ও অন্যান্য রোগের ওপরেও গর্ভাবস্থার এই বেখেয়ালি বোধ নির্ভর করে অলস জীবনযাত্রা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা গর্ভকালীন ডায়াবেটিস অতিরিক্ত বমিভাব—এগুলোর কারণেও বেখেয়ালি বোধ এবং হোচট খাওয়ার হার বেড়ে যায় গর্ভাবস্থায় হঠাৎ ভারসাম্য হারানোর এত কারণ দেখে ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেই কিছু ঘরোয়া সমাধান মেনে সাবধান থাকলে অনেক অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনাই এড়িয়ে যাওয়া সম্ভব১ দৈনন্দিন কাজ ধীরেসুস্থে করুনগর্ভাবস্থায় যে আপনার মধ্যে পরিবর্তন এসেছে এটা বুঝেই দৈনন্দিন কাজ করার চেষ্টা করুন হাঁটার সময় খেয়াল করুন পথে কোথাও ভেজা পিছলে অথবা উঁচুনিচু স্থান আছে কি না হাতে কোনো জিনিস থাকলে সেটি খেয়াল করে চলুন তাড়াহুড়া করে চলাফেরা করলে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এজন্য দেখে ও বুঝে ধীরেসুস্থে চলাচল করার চেষ্টা করুন২ গর্ভাবস্থার উপযোগী হালকা ব্যায়াম বেছে নিনশারীরিক ব্যায়াম গর্ভাবস্থায় পড়ে যাওয়া প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে গর্ভাবস্থার উপযোগী হালকা ব্যায়াম মাংসপেশি শক্ত করে এবং ভারসাম্য রক্ষাতেও সাহায্য করে হাঁটাহাঁটি দৌড়ানো জগিং অথবা সাঁতার কাটা—এ ধরনের ব্যায়াম এসময়ে করতে পারেন৩ গর্ভাবস্থার জন্য উপযোগী কোমরের বেল্ট ব্যবহার করুনভারসাম্য রক্ষার জন্য ম্যাটারনিটি সাপোর্ট বেল্ট ব্যবহার করা একটি কার্যকরী উপায় এটি গর্ভাবস্থায় পড়ে যাওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করে এটি যেকোনো ফার্মেসি অথবা বড় সুপার মার্কেটে পেতে পারেন৪ ঝুঁকিপূর্ণ কাজ এড়িয়ে চলুনঝুঁকিপূর্ণ কোনো কাজ দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় এজন্য গর্ভকালীন সময়ে এ ধরনের কাজ করা থেকে বিরত থাকুন যেমন মই বেয়ে ওঠা চেয়ারের ওপর উঠে কোনো কাজ করা এ ধরনের কোনো কাজ করার সময়ে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে এজন্য এ ধরনের কাজের প্রয়োজন হলে পরিবার অথবা কাছের কোনো মানুষকে করে দিতে বলুন৫ ঝুঁকিপূর্ণ পরিস্থিতিতে অতিরিক্ত সাবধান থাকুনযেসব পরিস্থিতিতে ঝুঁকি হওয়ার কোনো সম্ভাবনা আছে সেখানে অতিরিক্ত সাবধানতা মেনে চলাচল করুন যেমন সিঁড়ি দিয়ে ওঠা অথবা নামার সময় সবসময় রেলিং ধরে ওঠানামা করুন অন্ধকার অথবা কম আলোর রাস্তায় চলাচল করবেন নাআপনি আগে অতিরিক্ত ব্যায়াম ও খেলাধুলায় অভ্যস্ত থাকলেও গর্ভাবস্থার সময়টাতে ঝুঁকিপূর্ন খেলা কমিয়ে দিন যেমন ব্যাডমিন্টন উঁচুনিচু স্থানে জগিং ঘোড়ায় ওঠা জিমন্যাস্টিকস—এ ধরনের খেলায় দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা বেশি থাকে৬ আরামদায়ক জুতা বেছে নিনঅনেক নারীরই হিল জুতা পরতে ভালো লাগতে পারে কিন্তু গর্ভকালীন সময়ে হিলজুতা অথবা পিছলে যেতে পারে এমন ধরনের জুতা পরা থেকে বিরত থাকুন এগুলো চলাফেরার অসুবিধা করার সাথে সাথে পড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও বাড়ায় বরং এমন ধরনের জুতা বেছে নিন যাতে চলাফেরা করতে স্বাচ্ছন্দ্য বোধ করেন৭ পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিনগর্ভাবস্থায় ক্লান্তি কমাতে রাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন এবং দিনেও প্রয়োজন অনুযায়ী বিশ্রাম নিন এটি ক্লান্তির কারণে তৈরি হওয়া বেখেয়ালি বোধ কমাতে সাহায্য করবে৮ পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম করুনপায়ের গোড়ালির ফুলে যাওয়ার কারণে সমস্যা তৈরি হলে একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন এটি গোড়ালি ফুলে যাওয়া কমাতে সাহায্য করে ব্যায়ামের নিয়ম জানতে আমাদের পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম লেখাটি পড়ুন৯ সম্ভাব্য রোগের চিকিৎসায় ডাক্তারের পরামর্শ নিনকার্পাল টানেল সিনড্রোম অথবা অন্য কোনো রোগের কারণে আপনি বেখেয়ালি হয়ে যাচ্ছেন বলে মনে হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ডাক্তার রোগ অনুযায়ী উপযুক্ত পরামর্শ দিয়ে কোনো অনাকাঙ্ক্ষিত দুর্ঘটনা প্রতিরোধ করতে পারবেনকখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত গর্ভাবস্থায় বেখেয়ালি হয়ে যাওয়া একটি কমন উপসর্গ শুধুমাত্র এই উপসর্গ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার তেমন কারণ নেই সাধারণত তবে যদি বেখেয়ালি হওয়ার সাথে সাথে বিশেষ কিছু লক্ষণ দেখা যায় সেটি অন্য কোনো রোগের কারণবশত হতে পারে এমন কিছু লক্ষণ হচ্ছে—1 প্রচন্ড মাথাব্যথা2 চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টি ঘোলা হয়ে যাওয়া বা চোখের সামনে আলোর ঝলকের মত দেখতে পাওয়া3 বমি হওয়া4 পাঁজরের হাড়ের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথা5 শরীরের বিভিন্ন জায়গা (যেমন পায়ের পাতা গোড়ালি মুখ ও হাত) হঠাৎ ফুলে যাওয়াএগুলো প্রিএক্লাম্পসিয়ার লক্ষণ হতে পারে প্রিএক্লাম্পসিয়া গর্ভাবস্থার জরুরি একটি অবস্থা এজন্য এ ধরনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন গর্ভাবস্থায় ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা খুব কমন সমস্যা না হলেও গর্ভবতীরা এই সমস্যাটিরও সম্মুখীন হতে পারেন আর দশ জনের যেসব কারণে পাতলা পায়খানা হয় গর্ভবতী নারীরও একই কারণে পাতলা পায়খানা হতে পারেগর্ভাবস্থায় ডায়রিয়া বা পাতলা পায়খানা খুব কমন সমস্যা না হলেও গর্ভবতীরা এই সমস্যাটিরও সম্মুখীন হতে পারেন আর দশ জনের যেসব কারণে পাতলা পায়খানা হয় গর্ভবতী নারীরও একই কারণে পাতলা পায়খানা হতে পারেসেই সাথে গর্ভাবস্থার বিশেষ কিছু বিষয়ও ডায়রিয়া হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে তবে বেশি বেশি পানি খেয়ে শরীরকে হাইড্রেটেড রাখতে পারলে সাধারণত ডায়রিয়া গুরুতর কোনো সমস্যা তৈরি করে নাডায়রিয়া বলতে ঘন ঘন—দিনে তিন বার বা তার বেশি—পাতলা পায়খানা হওয়া বোঝায় পায়খানা স্বাভাবিক পায়খানার চেয়ে কিছুটা নরম হতে পারে আবার একেবারে তরলও হতে পারে সেই সাথে আপনার পেটে ফোলা ফোলা ভাব বমি বমি ভাব ও পেটে ব্যথা থাকতে পারে পেট মোচর দিচ্ছে বলে মনে হতে পারে ঘন ঘন বাথরুমে যাওয়ার তাগিদ থাকতে পারে সাধারণ সময়ে যে সকল কারণে পাতলা পায়খানা হয় সেগুলো গর্ভাবস্থাতেও ডায়রিয়া ঘটাতে পারে যেমন—1 খাদ্যে বিষক্রিয়া বা ফুড পয়জনিং2 ভাইরাস কিংবা ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত পরিপাকতন্ত্রের অন্য কোনো রোগ3 ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া যেমন অ্যান্টিবায়োটিক সেবনে ডায়রিয়া হতে পারে4 দূরে যাতায়াত ও যাত্রাপথে খাদ্যাভ্যাসে গড়বড় হলে ট্রাভেলারস ডায়রিয়া হতে পারে5 ল্যাকটোজ ইনটলারেন্ট অর্থাৎ দুগ্ধজাতীয় খাবার হজমে যাদের সমস্যা হয় তারা দুধ বা দুধের তৈরি কোনো খাবার খেলে ডায়রিয়া হতে পারে6 ক্যাফেইন অর্থাৎ চাকফি জাতীয় পানীয় সেবনে অনেকের ডায়রিয়া হতে পারে বা ডায়রিয়ার সমস্যা বেড়ে যেতে পারে7 অন্যান্য কিছু শারীরিক সমস্যা ডায়রিয়ার জন্য দায়ী হতে পারে যেমন ক্রোন্স ডিজিজ সিলিয়াক ডিজিজ আইবিএস বা ইরিটেবল বাওয়েল সিন্ড্রোম হাইপারথাইরয়েডিজম তবে গর্ভাবস্থায় পাতলা পায়খানা হওয়ার ক্ষেত্রে এই বিষয়গুলো ছাড়াও আরও কিছু বিশেষ বিষয়ের ভূমিকা থাকতে পারে যেগুলো গর্ভাবস্থার সাথেই সম্পৃক্ত যেমন—শারীরিক পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে বিভিন্ন পরিবর্তন ঘটে থাকে এসময় আপনার বাড়ন্ত জরায়ু আপনার পেটের ওপর চাপ সৃষ্টি করে গর্ভাবস্থায় পরিপাক নালীর ভেতরে খাবারের স্বাভাবিক চলাচল বাধাগ্রস্ত হতে পারে এর ফলে দেখা দিতে পারে বিভিন্ন ধরনের সমস্যা যেমন বুক জ্বালাপোড়া বমি বমি ভাব ও বমি পেটের অস্বস্তি কোষ্ঠকাঠিন্য অথবা ডায়রিয়াখাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন গর্ভবতী হওয়ার পর দেখা যায় মায়েরা কী খাচ্ছেন না খাচ্ছেন—তা নিয়ে সচেতন হয়ে যান অনেকে হঠাৎ করে অস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থেকে পুষ্টিকর আঁশযুক্ত খাদ্যাভ্যাসে সরে আসেন হঠাৎ এমন পরিবর্তনে মানিয়ে নেওয়া আপনার পরিপাকতন্ত্রের জন্য কঠিন হতে পারে এবং আপনার ডায়রিয়া অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারেগর্ভাবস্থায় ভিটামিন ও মিনারেলের ট্যাবলেট গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় সব পুষ্টি সঠিক মাত্রায় নিশ্চিত করার জন্য আপনাকে বিভিন্ন ট্যাবলেট দেওয়া হয় যেমন ফলিক এসিড আয়রন জিংক এসব ট্যাবলেট আপনার সন্তানের বিকাশের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ তবে এগুলো শরীরে কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া তৈরি করতে পারেগর্ভাবস্থার ভিটামিন ট্যাবলেট সেবনের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার মধ্যে বমি বমি ভাব বমি এবং কোষ্ঠকাঠিন্য সবচেয়ে বেশি দেখা যায় তবে কিছু ক্ষেত্রে এর পাশাপাশি ডায়রিয়াও দেখা দিতে পারে অনেকসময় অল্প মাত্রার ডায়রিয়া দুই একদিনের মতো সময় দিলে নিজেই সেরে যায় তবে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বুক জ্বালাপোড়ার মতো পাতলা পায়খানাও শুধু একটি অস্বস্তিকর উপসর্গ হতে পারেগর্ভাবস্থায় ডায়রিয়ার ঘরোয়া চিকিৎসায় যেসব নিয়ম মেনে চলতে পারেন—১ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়াডায়রিয়া হলে পায়খানার সাথে বিপুল পরিমাণ পানি শরীর থেকে বের হয়ে যায় শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্য পানি খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই বের হয়ে যাওয়া পানি পুনরায় পূরণ করার জন্য বেশি করে পানি পান করতে হবেপানির সাথে বিভিন্ন তরল খাবারও (যেমন স্যুপ অথবা জুস) খাওয়া যেতে পারে তবে চা কফি কিংবা দুধ ও দুধের তৈরি খাবার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন এগুলো ডায়রিয়া বাড়িয়ে দিতে পারে২ সহজে হজম করা যায় এমন খাবার খাওয়াযেসব খাবার সহজেই হজম হয়ে যায় সেগুলো খেলে আপনার পরিপাকতন্ত্রে বাড়তি কোনো চাপ পড়বে না এসব খাবারের মাঝে রয়েছে—কাচঁকলা সাদা ভাত টোস্ট বিস্কুট সিদ্ধ আলু মুরগি বা সবজির স্যুপএগুলো বাজারে প্যাকেট আকারে পাওয়া যায় যা সহজে শুধুমাত্র গরম পানি দিয়েই তৈরি করে নেওয়া সম্ভবপেট খারাপ হলে অনেকে খাবারের তালিকায় কেবল সাদা ভাত কিংবা জাউ ভাত রাখে এর পরিবর্তে ভাতের সাথে সিদ্ধ অথবা রান্না করা কাঁচকলা মিশিয়ে খেতে পারেন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে কাঁচকলা পাতলা পায়খানা ও বমি কমাতে কার্যকর ভূমিকা রাখে ডায়রিয়া অথবা বমি হলে শরীর থেকে পানি ও অন্যান্য লবণের সাথে পটাশিয়ামও বেরিয়ে যায় পাকা কলায় প্রচুর পটাশিয়াম থাকে এটি হজম করাও সহজ একারণে পটাশিয়াম এর অভাব পূরণ করতে পাকা কলাও খেতে পারেনখেয়াল করুন ডায়রিয়া হলে পাতলা পায়খানা কমানোর যেসব খাবার খাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয় সেগুলো বেশি খাওয়া হয়ে গেলে আবার কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দিতে পারে তাই পরিমিত ভাবে এসব খাবার খেতে হবে এবং সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে পাশাপাশি শরীরকে সক্রিয় রাখতে হবেএকই সাথে কিছু খাবার সতর্কভাবে এড়িয়ে চলতে হবে যেমন—দুধ ও দুগ্ধজাত খাবার অতিরিক্ত ঝাল খাবার তৈলাক্ত খাবার ভাজাপোড়া খাবার৩ খাবার স্যালাইনসাধারণত প্রতিবার পাতলা পায়খানা হওয়ার পর এক প্যাকেট ওরস্যালাইন আধা লিটার পানিতে গুলিয়ে খাওয়ার উপদেশ দেওয়া হয় বাসায় খাবার স্যালাইনের প্যাকেট না থাকলেও ঘরোয়া উপায়ে খাবার স্যালাইন তৈরি করে নিতে পারেনএ ছাড়া চিড়ার পানি ভাতের মাড় কিংবা ডাবের পানিও খাওয়া যেতে পারে ভাতের মাড়ে সামান্য লবণ দিতে পারেন বমি ভাব হলে স্যালাইন ছোটো ছোটো চুমুকে খাওয়ার চেষ্টা করবেন৪ পরিছন্নতা বজায় রাখাপাতলা পায়খানা হলে আপনার পরিপাকতন্ত্র থেকে জীবাণু সহজে প্রস্রাবের রাস্তায় যেয়ে ইনফেকশন করার আশংকা থাকে তাই পাতলা পায়খানা হলে পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা খুবই জরুরি প্রতিবার পায়খানার পর পানি দিয়ে সামনে থেকে পেছনের দিকে ভালো মতো ধুয়ে নিবেন বাথরুম থেকে বের হওয়ার আগে সাবান অথবা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে নিবেনগর্ভাবস্থায় ডায়রিয়ার জন্য ঔষধসাধারণত গর্ভাবস্থায় ডায়রিয়ার জন্য কোনো ঔষধ ব্যবহার করা হয় না খাবার স্যালাইন পানি ও তরল খাবার দিয়ে পানিশূন্যতা প্রতিরোধ করাই এর চিকিৎসাখুব গুরুতর অবস্থায় লোপেরামাইড নামক একটি ঔষধ ব্যবহার করা যেতে পারে তবে তা একেবারে কম পরিমাণে গবেষণায় এখনো গর্ভাবস্থায় এই ঔষধটির নিরাপত্তা নিয়ে খুব বেশি জানা যায়নি তাই পারতপক্ষে গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া ঔষধটির ব্যবহার না করাই ভালো সাধারণত ডায়রিয়া স্বল্প মাত্রায় হয়ে অল্প সময়ের মাঝে নিজে নিজে সেরে যায় তবে নিচের লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে—1 ডায়রিয়া দুইদিনের বেশি সময় স্থায়ী হলে2 ২৪ ঘন্টায় ৬ বার কিংবা তার চেয়ে বেশি পাতলা পায়খানা হলে3 পেটে প্রসবের টানের মতো টান অনুভূত হয়4 গর্ভের সন্তানের নড়াচড়া কমে যায়5 তাপমাত্রা ১০২২ ডিগ্রি ফারেনহাইট বা তার বেশি হলে6 পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দেয়7 বারবার বমি হতে থাকে8 পায়খানার সাথে লাল রক্ত গেলে কিংবা আলকাতরার মতো কালো আঠালো পায়খানা হলে9 পায়খানার সাথে পুঁজ গেলে10 তলপেটে কিংবা পায়খানার রাস্তায় যদি প্রচণ্ড ব্যথা হ11 ডায়রিয়া সেরে যাওয়ার পরিবর্তে আরও বাড়তে থাকে কিছু ক্ষেত্রে ডায়রিয়া ভয়াবহ আকারে হতে পারে যার ফলে পায়খানার সাথে অনেক বেশি পরিমাণে পানি শরীর থেকে হারিয়ে যায় এই পানিশূন্যতাই ডায়রিয়ার সবচেয়ে ভয়াবহ জটিলতাপানিশূন্যতার ফলে শরীরে বিশেষ করে রক্তে লবণের মাত্রায় নানান ধরনের অস্বাভাবিকতা তৈরি হতে পারে যা আপনার জন্য বিপজ্জনক তাই পাতলা পায়খানা হলে বেশি করে পানি ও তরল খাবার খেয়ে শরীরের পানির অভাব পূরণ করা খুবই গুরুত্বপূর্ণপানিশূন্যতা তৈরি হলে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে—1 ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া2 মুখ শুকিয়ে যাওয়া3 স্বাভাবিকের চেয়ে কম পরিমাণে প্রস্রাব হওয়া4 গাড় রঙের প্রস্রাব5 ক্লান্তি6 মাথা ঘুরানো7 চামড়ায় চিমটি দিয়ে ধরে কিছুক্ষণ পর ছেড়ে দিলে তা সাথে সাথে পূর্বের অবস্থানে ফিরে না যাওয়া বা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় লাগা8 চোখ দেবে যাওয়া বা কোটরের ভেতরে ঢুকে গেছে বলে মনে হওয়াএই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুন ডায়রিয়া গর্ভধারণের একটি লক্ষণগর্ভাবস্থার শুরুর দিকে শরীরের হরমোনের মাত্রা পরিবর্তন হওয়ার ফলে পেটের কিছু সমস্যা তৈরি হতে পারে যার মধ্যে পাতলা পায়খানাও রয়েছে তবে ডায়রিয়া কখনোই গর্ভধারণের সুনির্দিষ্ট লক্ষণ নয়গর্ভবতী হলে আপনি প্রথম যেই উপসর্গ খেয়াল করতে পারেন সেটি হলো পিরিয়ড বাদ যাওয়া এ ছাড়া স্তনে ব্যথা হওয়া মাথা ঘুরানো বমি বমি লাগা—এরকম কিছু উপসর্গ আপনি লক্ষ করে থাকতে পারেন তারপর প্রেগন্যান্সি টেস্টের মাধ্যমে গর্ভধারণ নিশ্চিত করা যায় গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ ডায়রিয়া গর্ভপাত হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয়অনেকসময় ডায়রিয়া হলে গর্ভবতী নারীরা দুশ্চিন্তায় পরে যান যে এর ফলে গর্ভের সন্তানের উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পরতে পারে অথবা গর্ভপাত হতে পারে পাতলা পায়খানার সাথে পেটে ব্যথা হলে সেই ব্যথা গর্ভপাতের ব্যথার মতো মনে হতে পারেতবে আপনার প্রজননতন্ত্র ও পরিপাক নালি শরীরের সম্পূর্ণ ভিন্ন দুইটি অঙ্গতন্ত্র গর্ভাবস্থায় ডায়রিয়া হলে যদি পানিশূন্যতা ও ইনফেকশনের জন্য যথাযথ চিকিৎসা নেওয়া হয় তা হলে সাধারণত গর্ভাবস্থার উপর এর কোনো নেতিবাচক প্রভাব পড়ে নাগর্ভাবস্থার শেষের দিকে ডায়রিয়া প্রসবের লক্ষণ প্রোস্টাগ্ল্যানডিন আমাদের শরীরের একটি গুরুত্বপূর্ণ রাসায়নিক উপাদান যা প্রসবেও সহায়তা করে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শরীরে এর মাত্রা বেড়ে যায় এর ফলে পাতলা পায়খানা হতে পারে সাধারণত প্রসবের দুই একদিন আগে এমন হয়ে থাকে তবে সবার ক্ষেত্রে এমনটা নাও হতে পারেতাই গর্ভাবস্থার শেষের দিকে ডায়রিয়া হলে প্রসবের সময় কাছে চলে এসেছে বলে ধারনা করা যেতে পারে তবে প্রসব শুরু হওয়ার আরও জোরালো কিছু লক্ষণ রয়েছে যা আপনাকে প্রসবের প্রস্তুতি নিতে আরও সুনির্দিষ্ট ভাবে সহায়তা করবে যেমন পেটে টান বা প্রসব ব্যথা অনুভব করা পানি ভাঙা রক্ত মিশ্রিত স্রাব নির্গত হওয়া গর্ভাবস্থায় আপনার পেটে ব্যথা ও যন্ত্রণা হওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি হতে পারে এমন একটি অনুভূতি হলো পেট শক্ত হওয়া বা পেট আঁটসাঁট হয়ে আসছে মনে হওয়াগর্ভাবস্থায় আপনার পেটে ব্যথা ও যন্ত্রণা হওয়াসহ বিভিন্ন ধরনের অনুভূতি হতে পারে এমন একটি অনুভূতি হলো পেট শক্ত হওয়া বা পেট আঁটসাঁট হয়ে আসছে মনে হওয়াপেট শক্ত হওয়াকে মাঝে মাঝে পেট কামড়ানোর সাথেও মিলিয়ে ফেলতে পারেন এমনকি নিয়মিত বিরতিতে পেটে টান অনুভব করলে একে জরায়ুর সংকোচনের মতোও মনে হতে পারে গর্ভাবস্থায় আপনার গর্ভের বাড়ন্ত শিশুকে জায়গা দিতে আপনার জরায়ু আকারে বাড়ে এর ফলে আপনার পেট আঁটসাঁট হয়ে আসতে পারে স্বাভাবিক কারণে আপনার যেমন এ অনুভূতি হতে পারে তেমনি কোনো কোনো ক্ষেত্রে গর্ভপাত কিংবা অকাল প্রসবের মতো জটিল সমস্যা থেকেও পেট শক্ত হতে পারেগর্ভাবস্থার বিভিন্ন সময়ে পেট শক্ত বা টানটান হওয়ার কারণগুলো হলো—প্রথম ত্রৈমাসিকেজরায়ুর মাংসপেশির স্ট্রেচিং বা টান গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস আপনার বাড়ন্ত শিশুর কারণে বড় হয়ে যাওয়া জরায়ু চারপাশে চাপ দিতে থাকে একারণে পেট শক্ত লাগতে পারে জরায়ুর পেশিগুলো প্রসারিত ও দীর্ঘায়ত হওয়ার কারণে আপনার হঠাৎ হঠাৎ করে পেটে তীব্র ব্যথাও অনুভব হতে পারেকোষ্ঠকাঠিন্য ও গ্যাস গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য পরিচিত একটি সমস্যা[১] গর্ভধারণের ফলে কিছু বিশেষ হরমোনের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায় এসব হরমোনের প্রভাবে খাবার হজমের সাথে জড়িত পেশিগুলো কিছুটা শিথিল হয়ে আসে এবং হজমের গতি কমে যায়[২][৩]এতে করে আপনার পেটে গ্যাস তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পেট ফাঁপা লাগে অনেকের ক্ষেত্রে এই হরমোনের প্রভাবে কোষ্ঠকাঠিন্যও দেখা দেয় গর্ভপাতের কারণে গর্ভধারণের ২৮ তম সপ্তাহের আগে গর্ভের শিশুর মৃত্যু হওয়াকে গর্ভপাত বলে পেট শক্ত হয়ে আসার পাশাপাশি যদি আপনার পেটে ব্যথাও থাকে এটি গর্ভপাতের লক্ষণ হতে পারেগর্ভপাত হলে সাধারণত আপনার পেট শক্ত হয়ে আসার পাশাপাশি নিচের এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যায়—1 যোনিপথে ফোঁটা ফোঁটা কিংবা ভারী রক্তপাত হওয়া2 পেট ব্যথা হওয়া বা মাসিকের ব্যথার মতো পেট কামড়ানো3 ব্যথা কিংবা রক্তপাত ছাড়াও যোনিপথে হঠাৎ অধিক পরিমাণে তরল বেরিয়ে আসা4 যোনিপথে যেকোনো ধরনের টিস্যু জাতীয় পদার্থ বা মাংসপিণ্ডের ন্যায় অংশ বের হয়ে আসাএ ছাড়া গর্ভাবস্থায় নিচের কারণগুলো থাকলে আপনার গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকতে পারে—1 অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস2 ইনফেকশন3 থাইরয়েডের সমস্যা4 সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস5 জরায়ুর গঠন বা কাজে যেকোনো ধরনের ত্রুটি6 বংশগত কারণপেট ব্যথা ও শক্ত হয়ে আসার সাথে সাথে উপরের লক্ষণগুলো অথবা ঝুঁকির কারণগুলো থাকলে জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোনগর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকেদ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গর্ভাবস্থার পরিবর্তনগুলোর সাথে আপনার শরীর খাপ খাওয়াতে শুরু করে এসময়ও বিভিন্ন কারণে আপনার পেট শক্ত মনে হতে পারেযেমন দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে আপনার জরায়ু থেকে কুঁচকি পর্যন্ত থাকা রাউন্ড লিগামেন্টও জরায়ুর সাথে সাথে প্রসারিত হয় এর ফলে আপনার জরায়ু ও কুঁচকির আশেপাশে শক্ত হয়ে আসছে বা টান খাচ্ছে বলে মনে হতে পারেব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচনগর্ভাবস্থায় ব্র্যাক্সটন হিক্স নামের সংকোচনের জন্যও আপনার পেট আঁটসাঁট বা শক্ত হয়ে আসতে পারে প্রসবের জন্য প্রস্তুতিমূলক স্বাভাবিক সংকোচন প্রসারণ হলো ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন একে ফলস লেবার পেইনও বলা হয়সাধারণত গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় বা তৃতীয় ত্রৈমাসিকের আগে এই সংকোচন অনুভূত হয় না প্রকৃত প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার অনেক সপ্তাহ আগে থেকেই এ ধরনের প্রস্তুতিমূলক ব্র‍্যাক্সটন হিক্স সংকোচন শুরু হতে পারে ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন আপনার জরায়ুর ওপর থেকে শুরু হয়ে নিচে এসে নামে এ ধরনের সংকোচন অনিয়মিত ভাবে হয় ১৫ সেকেন্ড থেকে ৩০ সেকেন্ড ব্যাপী স্থায়ী হয় কখনো কখনো এর চেয়ে বেশি সময় ধরেও হতে পারেবিভিন্ন কারণে আপনার ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন হতে পারে যেমন—1 গর্ভাবস্থায় অনেক বেশি কাজকর্ম করলে2 মূত্রথলি পূর্ণ থাকলে বা প্রস্রাবের বেগ থাকলে3 সহবাসের সময় বা পরে4 শরীরে পানির অভাব থাকলে বা ডিহাইড্রেটেড হয়ে গেলেআপনি যদি প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হোন তাহলে ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচনকে প্রসবের ব্যথার সাথে মিলিয়ে ফেলতে পারেনব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন ও প্রসবের ব্যথার মধ্যে নিচের পার্থক্যগুলো দেখা যায়—1 ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন প্রকৃত প্রসব ব্যথা2 ব্র‍্যাক্সটন হিক্স সংকোচন হঠাৎ করেই শুরু হয় এই সংকোচন সাধারণত অনিয়মিত হয় কোনো নির্দিষ্ট ছন্দ থাকে না প্রকৃত প্রসব ব্যথা সাধারণত নির্দিষ্ট সময় পর পর নিয়মিত ভাবে হয় এই সংকোচন বা ব্যথার একটি সুনির্দিষ্ট ছন্দ বা ধরন থাকে3 ব্যথার স্থায়িত্ব ও তীব্রতা সাধারণত বাড়ে না ধীরে ধীরে ব্যথার স্থায়িত্ব ও তীব্রতা বাড়ে সময়ের সাথে নিয়মিত বিরতিতে ঘন ঘন ব্যথা হতে থাকে4 হাঁটাচলা করলে কিংবা বিশ্রাম নিলে এই ব্যথা বা সংকোচন কমে আসতে পারে অবস্থান পরিবর্তন করলেও এই সংকোচন বন্ধ হয়ে যেতে পারে বিশ্রাম হাঁটাচলা কিংবা অবস্থান পরিবর্তনে প্রকৃত প্রসব ব্যথা সাধারণত কমে না 5 এই ধরনের ব্যথা সাধারণত পেটের সামনের দিকেই অনুভূত হয় প্রকৃত প্রসব ব্যথা সাধারণত কোমরের পেছন দিক থেকে শুরু হয় এবং পরে পেটের সামনের দিকে আসে গর্ভাবস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিকেগর্ভাবস্থার তৃতীয় ত্রৈমাসিকে পেট শক্ত হয়ে আসা প্রসবের লক্ষণ হতে পারে এক্ষেত্রে শুরুতে মৃদু অনুভূতি থাকে যা সময়ের সাথে সাথে তীব্র হয়যদি আপনার পেটে প্রতি ঘন্টায় চার বারের বেশি সংকোচন হয় বিশেষ করে যদি গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহের আগে এমন হয় তাহলে সেটা প্রসবের লক্ষণ হতে পারে এসময়ে দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবেনিচের লক্ষণগুলোও প্রসবের কারণে দেখা যায় এসব লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন—1 পেট আঁটসাঁট হয়ে আসার পাশাপাশি তলপেটে ব্যথা হলে 2 যোনিপথে পরিষ্কার তরল বের হয়ে আসলে যাকে পানিভাঙা বলে3 যোনিপথে রক্তমিশ্রিত স্রাব কিংবা রক্ত বের হয়ে আসে আপনার পেট আঁটসাঁট হয়ে আসার অনুভূতি যদি মৃদু ও অনিয়মিত হয় তাহলে নিচের ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করে স্বস্তি পেতে পারেন—১ পর্যাপ্ত পানি পান করুন শরীরে পানির অভাব থেকে পানিশূন্যতা হলে পেটে টান খাওয়ার মতো এমন অনুভূতি হতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় পর্যাপ্ত পানি পান করার চেষ্টা করুন একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন২ খাবার গ্রহণে সতর্কতা অবলম্বন করুন কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে পেট শক্ত হয়ে আসলে সারাদিনে অল্প অল্প করে বেশ কয়েকবার খান আঁশ জাতীয় খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দিন ভাজাপোড়া খাবার ও কোমল পানীয় (যেমন কোক ফান্টা ও পেপসি) এড়িয়ে চলুনসতর্কতা গর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় খাবার অথবা পানীয় খাওয়া এড়িয়ে চলবেন সাধারণত ২ কাপ কফি কিংবা ২–৩ কাপ চায়েই এই পরিমাণ ক্যাফেইন থাকতে পারে3 নিয়মিত শরীরচর্চা করুন গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম খাবার হজমে সাহায্য করতে পারে এ ছাড়া ব্যায়াম গর্ভাবস্থার নানান জটিলতা কমাতেও সাহায্য করতে পারে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম করা নিরাপদ ও কার্যকর এটি নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করে এ ছাড়া সময়ের আগে সন্তান প্রসব হওয়া এবং কম ওজনের শিশু জন্মদানের সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করে শুধু তাই নয় গর্ভাবস্থায় শরীরচর্চা করলে নারীরা সন্তান প্রসবের পরে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন কাজেই আপনার ডাক্তারের নিষেধ না থাকলে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হালকা পরিশ্রম অথবা পছন্দের কোনো ব্যায়াম করতে পারেন4 অবস্থানের পরিবর্তন করুন আপনি যদি বুঝতে পারেন যে আপনার ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন হচ্ছে তাহলে নিজের অবস্থান পরিবর্তন করুন যেমন দাঁড়িয়ে থাকলে শুয়ে পড়ুনযেকোনো অস্বস্তিকর দেহভঙ্গিতেও এমন হতে পারে সেক্ষেত্রে আপনার জায়গার পরিবর্তন করে দেখুনখুব দ্রুত জায়গা পরিবর্তনেও এমন হতে পারে শোয়াবসা থেকে ওঠার সময়ে তাড়াহুড়ো না করে আস্তে ধীরে উঠুন বসা কিংবা শোয়ার ক্ষেত্রে প্রয়োজন অনুযায়ী বালিশ বা কুশন ব্যবহার করে আরামদায়ক অবস্থান তৈরি করে নিন5 পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক ৭–৯ ঘণ্টার ঘুমকেই আদর্শ বলে ধরা হয় এর চেয়ে কম ঘুম হলে সেটি আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে ও গর্ভাবস্থায় জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে তাই গর্ভাবস্থায় নিয়ম মেনে ঘুম ও বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুনগরম 6 সেঁক বা মালিশ নিন মাংসপেশির ব্যথায় হালকা মালিশে উপকার পেতে পারেন তাই হালকা গরম কিছুর সেঁক নিতে পারেন এবং হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন তবে খুব বেশি গরম এড়িয়ে চলুনজরুরি অবস্থাআপনার অস্বস্তি যদি ঘরোয়া পদ্ধতিতে প্রশমিত না হয় অথবা নিচের কোনো লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোনআপনার গর্ভাবস্থার সময়কাল ৩৬ সপ্তাহের কম হলে এবং সেই সাথে 1 আপনার অকাল প্রসবের অন্যান্য লক্ষণ দেখা গেলে2 যোনিপথে রক্তপাত হলে3 যোনিপথে যেকোনো ধরনের তরল পদার্থ বের হয়ে আসলে4 তলপেটে অথবা যোনিপথে চাপ অনুভূত হলে5 প্রতি ৫ মিনিট পর পর বা নির্দিষ্ট বিরতিতে পেটে তীব্র সংকোচন বোধ করলে এবং সংকোচনগুলো প্রায় ৩০ সেকেন্ড থেকে ৬০ সেকেন্ড স্থায়ী হলে ও ক্রমাগত জোরালো হতে থাকলে6 আপনার গর্ভের শিশুর নড়াচড়া অনুভব করতে না পারলে কিংবা নড়াচড়া স্বাভাবিকের চেয়ে কমে গেলেসিজারের পর পেট শক্ত কেন হয় প্রসবের সময় যত ঘনিয়ে আসে মায়েদের প্রসব প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা তত বাড়তে থাকে পানি ভাঙা এর মধ্যে একটি সাধারণত প্রসব প্রক্রিয়ার শুরুতে পানি ভেঙে থাকে তবে পানি ভাঙা ছাড়াও প্রসব হতে পারেপ্রসবের সময় যত ঘনিয়ে আসে মায়েদের প্রসব প্রক্রিয়ার বিভিন্ন বিষয় নিয়ে চিন্তা তত বাড়তে থাকে পানি ভাঙা এর মধ্যে একটি সাধারণত প্রসব প্রক্রিয়ার শুরুতে পানি ভেঙে থাকে তবে পানি ভাঙা ছাড়াও প্রসব হতে পারেপানি ভাঙা কীভাবে বুঝতে হয় এবং পানি ভাঙ্গলে করণীয় কী—এসব বিষয়ে পরিষ্কার ধারণা থাকলে তা আপনার প্রসবের প্রক্রিয়াটিকে সহজ ও ঝামেলামুক্ত করতে সাহায্য করবে গর্ভে আপনার সন্তান একটি থলির ভেতর বেড়ে ওঠে যার নাম এমনিওটিক স্যাক এই থলিটি এক ধরনের পানি দিয়ে পূর্ণ থাকে যাকে বলা হয় এমনিওটিক ফ্লুইড এই থলিতে ভেসে ভেসে আপনার সন্তান গর্ভে বেড়ে ওঠে এবং বাইরের চাপ ও ইনফেকশন থেকে সুরক্ষা পায় প্রসবের শুরুতে এই থলিটি নিজ থেকেই ছিঁড়ে যায় এবং এর ভেতরের পানি সন্তান প্রসব হওয়ার রাস্তা দিয়ে বের হয়ে আসে এ প্রক্রিয়াকে আমরা পানি ভাঙা হিসেবে জানি গর্ভাবস্থার ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহকে প্রসবের স্বাভাবিক সময়কাল হিসেবে ধরা হয় স্বাভাবিকভাবে এই সময়ের মধ্যেই পানি ভাঙে সাধারণত প্রসববেদনা শুরু হওয়ার পর পানি ভাঙেতবে কারও কারও ক্ষেত্রে প্রসববেদনা শুরু হওয়ার আগেও পানি ভাঙ্গতে পারে যদি ৩৭ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগে পানি ভেঙে যায় তাকে বলা হয় প্রিটার্ম রাপচার অফ মেমব্রেন পানি ভাঙলে সাধারণত যেই লক্ষণগুলো দেখা যায়—পানি ভাঙ্গলে আপনার যোনি ও এর আশেপাশের জায়গা ভেজা ভেজা লাগতে পারে আপনার অন্তর্বাস এবং পায়জামা ভিজে যেতে পারে অনেকসময় যোনিপথে একসাথে অনেকটুকু পানিও বের হয়ে আসতে পারে তবে সাধারণত পানি ভাঙ্গলে লম্বা সময় ধরে অল্প অল্প করে পানি বের হতে থাকে এই পানি দেখতে পরিষ্কার অথবা হাল্কা হলুদ রঙের হয়পানি ভাঙা না কি প্রস্রাবঅনেকসময় প্রস্রাব না কি পানি ভাঙার পানি—এ নিয়ে বিভ্রান্তি তৈরি হতে পারে বিভ্রান্তি দূর করার একটি উপায় হলো বের হওয়া পানির গন্ধ যদি যোনি থেকে বের হওয়া তরলটির প্রস্রাবের মতো অর্থাৎ অ্যামোনিয়ার ন্যায় ঝাঁঝালো গন্ধ থাকে সেক্ষেত্রে এটি প্রস্রাব আর যদি কোনো গন্ধ না থাকে অথবা একটি মিষ্টি গন্ধ থাকে সেক্ষেত্রে এটি পানি ভাঙার পানিপানি ভাঙা না কি স্রাবস্রাব সাধারণত একটু ঘন আঠালো ও দুধের মতো সাদা হয় আর পানি ভাঙার পানিটি হালকা হলুদ বা ফ্যাকাশে রঙের এবং পাতলা তরল জাতীয় হয়ে থাকেতবে খেয়াল রাখতে হবে যে পানি ভাঙার সাথে একই সময়ে আপনার মিউকাস প্লাগ অর্থাৎ গর্ভকালে জরায়ুমুখে জমা হওয়া স্রাবও নিঃসৃত হতে পারে এটি কিছুটা রক্ত মিশ্রিত হতে পারে যাকে বলে শো প্রসব প্রক্রিয়ার শুরুতে এগুলো স্বাভাবিকভাবেই হয়ে থাকে তাই এমনটা হলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই পানি ভেঙে গেলে আপনি উত্তেজিত অনুভব করাটা স্বাভাবিক তবে নিজেকে শান্ত রেখে সঠিকভাবে পরবর্তী ধাপগুলো নেওয়ার চেষ্টা করুন যদি প্রসববেদনাসহ পানি ভেঙে থাকে তাহলে আপনার প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে ধারণা করা যায় সেক্ষেত্রে আপনার সন্তান প্রসবের পরিকল্পনা অনুযায়ী হাসপাতালে অথবা ম্যাটার্নিটি ক্লিনিকে যানকখন দ্রুত হাসপাতালে যাবেন1 যদি গর্ভাবস্থায় আপনাকে চিকিৎসক কোনো ইনফেকশনের ব্যাপারে সতর্ক করে থাকেন বিশেষ করে যদি আপনি গ্রুপ বি স্ট্রেপটোকক্কাস দিয়ে আক্রান্ত হয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে পানি ভাঙার সাথে সাথে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়ার চেষ্টা করুন কারণ উপযুক্ত ব্যবস্থা নেওয়া না হলে আপনার সন্তানও একই ইনফেকশনে আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে2 যদি পানি ভাঙার পর পানির রঙ সবুজাভ অথবা বাদামী মনে হয় সেক্ষেত্রে এমনিওটিক ফ্লুইডের সাথে গর্ভের শিশুর প্রথম পায়খানা বা মেকোনিয়াম মিশ্রিত থাকতে পারে এমনটা হলে গর্ভের শিশুর মেকোনিয়াম মিশ্রিত পানি খেয়ে ফেলার সম্ভাবনা থাকে যা শিশুটির ক্ষতি করতে পারে তাই দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে3 যদি পানির সাথে বেশি পরিমাণে রক্ত যেতে থাকে তবে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে পানিতে অল্প পরিমাণে রক্ত মিশ্রিত থাকা সাধারণত স্বাভাবিক কিন্তু বেশি পরিমাণে রক্ত যাওয়াটা গর্ভফুল বা প্লাসেন্টার জটিলতা নির্দেশ করে যা গর্ভের শিশুর জন্য মারাত্মক হতে পারে4 যদি একবার অল্প পরিমাণে পানি বের হয়ে থেমে যায় এ ক্ষেত্রে আপনার গর্ভের সন্তান নিচে নেমে এসে তার মাথা দিয়ে পানি বের হওয়ার রাস্তাবন্ধ করে দেওয়ার একটি আশংকা থাকে5 যদি পানি ভাঙার সাথে আপনার যোনিপথে কিছু আঁটকে আছে বলে মনে হয় অথবা যদি যোনিপথে নাড়ির একটি অংশ দেখতে পান যদি প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে আপনার পানি ভাঙে তাহলে আম্বিলিকাল কর্ড বা নাড়ি নিচে নেমে যাওয়ার আশংকা থাকে একে বলা হয় আম্বিলিকাল কর্ড প্রোল্যাপ্স যদি গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ অথবা তার পরে আপনার পানি ভাঙে এবং এর সাথে প্রসববেদনা শুরু না হয় সেক্ষেত্রে আপনি ২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করতে পারেন অপেক্ষা করার সময়ে কিছু নিয়ম মেনে চলুন—1 ইনফেকশনের ঝুঁকি কমানোর জন্য আপনার অন্তর্বাস যোনি ও যোনির আশেপাশের জায়গা পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন2 প্রয়োজনে প্যাড ব্যবহার করুন3 সহবাস এড়িয়ে চলুন4 টয়লেটে গেলে যোনির অংশটুকু সামনে থেকে পেছনের দিকে ধোয়ার ব্যাপারে গুরুত্ব দিনতবে বাসায় অপেক্ষা করার চেয়ে এসময়ে হাসপাতালে অভিজ্ঞ চিকিৎসকের তত্বাবধানে থাকাটাই অনেকে নিরাপদ মনে করেন২৪ ঘণ্টা অপেক্ষা করার পরও যদি প্রসববেদনা শুরু না হয় সেক্ষেত্রে কৃত্রিমভাবে প্রসব শুরু করানোর জন্য ডাক্তার আপনাকে কিছু ঔষধ দিতে পারেন যেমন অক্সিটোসিন কৃত্রিমভাবে প্রসব শুরু করানোর পদ্ধতিকে বলা হয় লেবার ইনডাকশন পানি অর্থাৎ এমনিওটিক ফ্লুইডে অ্যান্টিবডি থাকে যা গর্ভের শিশুকে বিভিন্ন রোগজীবাণু থেকে সুরক্ষা দেয় পানি ভাঙার ফলে এই পানি ছাড়া গর্ভের শিশু ইনফেকশনের ঝুঁকিতে থাকে তাই তাড়াতাড়ি শিশুকে বের করে আনার জন্য লেবার ইনডাকশন করা হয়যদি ৩৭ সপ্তাহের আগে এবং ৩৪ সপ্তাহের পর এমন হয় সেক্ষেত্রে পানি ভাঙার পর ২৪–৪৮ ঘন্টা পর্যন্ত প্রসববেদনা শুরু হওয়ার অপেক্ষা করা হয়ে থাকে এরপরও প্রসববেদনা শুরু না হলে সাধারণত অক্সিটোসিন দিয়ে প্রসব প্রক্রিয়া শুরু করানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৩৪ সপ্তাহের আগে পানি ভেঙে গেলে এবং প্রসব বেদনা না থাকলে এই অবস্থাকে বলা হয় প্রিটার্ম প্রিলেবার রাপচার অফ মেমব্রেন ৩৪ সপ্তাহের আগে গর্ভের শিশু সাধারণত পুরোপুরি পরিণত হয় না এসময় তার ফুসফুস অপরিপক্ব থেকে যায় তাই এসময়ে জন্মগ্রহণ করলে শিশুটির সুস্থভাবে বাঁচবার সম্ভাবনা কম থাকে এজন্য সাধারণত ৩৪ সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগে পানি ভাঙলেও প্রসবের প্রক্রিয়া যথাসম্ভব পেছানোর চেষ্টা করা হয়এক্ষেত্রে প্রসবের প্রক্রিয়া পেছাতে এবং গর্ভের শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করতে বিভিন্ন ব্যবস্থা নেওয়া হয়—1 গর্ভবতী মাকে টয়লেটের সুবিধাসহ বেড রেস্ট অর্থাৎ সম্পূর্ণ বিশ্রামে রাখা হয়2 গর্ভের শিশুর ফুসফুসের বিকাশ ত্বরান্বিত করতে এবং রেসপাইরেটরি ডিসট্রেস সিনড্রোম নামক শ্বাসকষ্টজনিত মারাত্মক জটিলতা কমাতে স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ দেওয়া হয় যেমন বেটামিথাসন অথবা ডেক্সামিথাসন)3 ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়4 গর্ভের শিশুর মস্তিষ্ক ও স্নায়ুতন্ত্রের সুরক্ষার জন্য ম্যাগনেসিয়াম সালফেট নামক ঔষধ দেওয়া হতে পারে5 গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুকে সার্বক্ষণিক পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে হওয়া সমস্যাগুলোর মধ্যে শ্বাসকষ্ট অন্যতম এসময় এমন শ্বাসকষ্ট হওয়া অস্বাভাবিক না তবে কখনো কখনো আপনার হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের রোগও এর পেছনে দায়ী হতে পারে সেক্ষেত্রে পরীক্ষার মাধ্যমে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবেগর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে হওয়া সমস্যাগুলোর মধ্যে শ্বাসকষ্ট অন্যতম এসময় এমন শ্বাসকষ্ট হওয়া অস্বাভাবিক না তবে কখনো কখনো আপনার হৃৎপিণ্ড ও ফুসফুসের রোগও এর পেছনে দায়ী হতে পারে সেক্ষেত্রে পরীক্ষার মাধ্যমে সে সম্পর্কে নিশ্চিত হতে হবেশ্বাসকষ্ট আপনার অস্বস্তির পাশাপাশি ঘুমেও বিঘ্ন ঘটাতে পারে গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্ট হলে করণীয় কী এবং কখন জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে তা এই আর্টিকেলটিতে তুলে ধরা হয়েছে গর্ভবতী মায়েরা শ্বাসকষ্টকে এভাবে বর্ণনা করে থাকেন—স্বাভাবিকভাবে শ্বাস নিতে পারছেন না শ্বাস নেওয়ার জন্য অধিক পরিশ্রম করতে হচ্ছে গলা ও বুক চেপে আসছে মনে হচ্ছে পর্যাপ্ত বাতাস বা অক্সিজেন পাচ্ছে না মনে হচ্ছে অর্থাৎ বুক ভরে শ্বাস নিতে পারছেন না গর্ভাবস্থায় শ্বাসকষ্ট অনেক কারণেই হতে পারে তাই কারণ ভেদে প্রায় সব ত্রৈমাসিকেই আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারেগর্ভাবস্থার শুরুর দিকে হরমোনের তারতম্য শ্বাসপ্রশ্বাসকে পরিবর্তন করে এসময় আপনার অতিরিক্ত ক্লান্তি থেকেও মনে হতে পারে আপনার অতিরিক্ত অক্সিজেন প্রয়োজন গর্ভাবস্থার মাঝের দিকে আপনার জরায়ুর বৃদ্ধিতে আপনার শ্বাসতন্ত্র ও রক্ত সংবহনতন্ত্রের বেশ কিছু পরিবর্তন হয় এতে করে আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারেআবার গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শ্বাসকষ্ট অনেকটা বেড়ে যেতে পারে কারণ ৩১ থেকে ৩৪ সপ্তাহের মধ্যে আপনার বাড়ন্ত শিশু অনেক বেশি জায়গা নিয়ে ফেলে এতে করে বুক ও পেটের মাঝামাঝি থাকা ডায়াফ্রাম নামের শ্বাসপ্রশ্বাসের সাহায্যকারী পেশিতে চাপ পড়ে এবং শ্বাসকষ্ট হয়তবে গর্ভাবস্থার শেষ সপ্তাহে আপনার শ্বাসকষ্ট কিছুটা কমতে পারে কারণ এসময় ডেলিভারির জন্য আপনার শিশু কিছুটা নিচে নামতে শুরু করে ফলে শ্বাস নেওয়ার জন্য কিছুটা বাড়তি জায়গা পাওয়া যায় নিচের কারণগুলোর ফলে গর্ভাবস্থায় আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারে—1 বাড়ন্ত জরায়ু গর্ভাবস্থায় জরায়ুর আকার বেড়ে যাওয়ার কারণে তা পেটের ওপর চাপ দেয় ফলে উপরের দিকে থাকা ফুসফুসের ওপরও কিছুটা চাপ পড়ে এতে করে ফুসফুসের অক্সিজেন বিনিময়ের স্থানটি সংকুচিত হয়ে আসে এ কারণে শ্বাস নিতে কিছুটা কষ্ট হয়2 হরমোনের পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায় এর মধ্যে প্রোজেস্টেরন হরমোন অন্যতম শরীরে প্রোজেস্টেরন এর মাত্রা বেড়ে গেলে তা শ্বাসপ্রশ্বাসের স্বাভাবিক গতিকে বাড়িয়ে দেয় ফলে অনেকে শ্বাসকষ্ট অনুভব করেন সাধারণত গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই শরীরে প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বাড়তে থাকে তাই এসময়ও অনেকের শ্বাসকষ্ট শুরু হতে পারে 3 একাধিক গর্ভধারণ যমজ শিশু বা একের অধিক সন্তান ধারণ করলে আপনার জরায়ু অধিক জায়গা দখল করবে সেক্ষেত্রে আপনার ফুসফুস প্রসারণের জন্য আরও কম জায়গা পাবে এবং এতে শ্বাসকষ্ট হতে পারেঅতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধি গর্ভাবস্থায় আপনার অতিরিক্ত ওজন বাড়লে সেটি থেকেও বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা হতে পারে এর মধ্যে শ্বাসকষ্ট অন্যতম4 অন্যান্য রোগ গর্ভাবস্থা সম্পর্কিত কারণ ছাড়াও বিভিন্ন রোগের কারণেও আপনার শ্বাসকষ্ট হতে পারে যেমন রক্তশূন্যতা প্রিএক্লাম্পসিয়া পালমোনারি এমবোলিজম অ্যাজমা বা হাঁপানি নিউমোনিয়া কোভিড১৯এ ছাড়াও নিচের কারণগুলোও আপনার শ্বাসকষ্টের পেছনে দায়ী হতে পারে—1 এলার্জি2 দুশ্চিন্তা3 থাইরয়েডের সমস্যাকোনো কারণে শ্বাসনালীতে কিছু আটকে গেলেগর্ভাবস্থায় যেকোনো কারণে আপনার শ্বাসকষ্ট হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অন্য যেকোনো রোগ বা সমস্যার কারণে যদি আপনার শ্বাসকষ্ট না হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে আপনার বিশেষ কোনো চিকিৎসার তেমন প্রয়োজন হবে না তবে শ্বাসকষ্ট নিয়ে আপনার যেকোনো সমস্যা বা অস্বস্তির কথা গর্ভকালীন চেকআপের সময় আপনার চিকিৎসককে বলুনএসময় চিকিৎসক নিচের বিষয়গুলো পর্যবেক্ষণ করবেন—1 আপনার হার্টরেট এবং শ্বাসপ্রশ্বাসের হার চেক করবেন2 আপনার কী রকম ব্যায়াম বা কাজকর্ম করা উচিত সে সম্পর্কে ধারণা দিবেন 3 আপনার শ্বাসকষ্টের পেছনে অন্য কোনো রোগ থাকলে সেটি নির্ণয় করবেন এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা দিবেন4 শ্বাস কষ্ট নিয়ে আপনার কোনো জিজ্ঞাসা থাকলে সেটির উত্তর দিবেন5 প্রয়োজনে আপনাকে কোনো বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে পাঠাবেন গর্ভাবস্থার কারণে শ্বাসকষ্ট হলে সেটি সাধারণত প্রতিরোধ করা যায় না তবে শ্বাসকষ্ট বোধ করলে নিচের ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে স্বস্তি পেতে পারেন—1 নিজেকে শান্ত করুন যেকোনো কিছু নিয়ে দুশ্চিন্তা করলে শ্বাসকষ্ট বেড়ে যেতে পারে কাজেই শ্বাসকষ্ট হলে প্রথমেই নিজেকে শান্ত করার চেষ্টা করুন2 যেকোনো কাজ ধীরে সুস্থে করুন কোনো ভারী কাজ বা ব্যায়াম করার ফলে যদি আপনার শ্বাসকষ্ট হয় সবার আগে কাজটি থামান কাজের মাঝে বিরতি নিন3 অবস্থানের পরিবর্তন করুন সোজা হয়ে বসুন প্রয়োজনে কাঁধের সাহায্যে হেলান দিন বুকে চাপ অনুভব করলে এতে করে তা কিছুটা কমতে পারে4 দেহভঙ্গি খেয়াল করুন শ্বাসকষ্ট অনুভব করলে আপনার দুই হাত কিছুক্ষণ মাথার উপরে তুলে ধরে রাখুন এতে করে আপনার পাঁজরের ওপর চাপ কমে আপনার শ্বাস নিতে সুবিধা হবে5 সঠিক পজিশনে ঘুমান রাতে ঘুমানোর সময় অতিরিক্ত বালিশ দিয়ে কোমর থেকে মাথা কিছুটা উঁচু করে ঘুমান এ ধরনের অবস্থাকে ডাক্তারি ভাষায় প্রপড আপ পজিশন বলে এতে করে ঘুমানোর সময় আপনার ফুসফুসের ওপর চাপ কম পড়ে6 শ্বাস প্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম আপনাকে গভীরভাবে শ্বাস নিতে সাহায্য করে এর পাশাপাশি আপনি অনেকটা রিল্যাক্স হবেন7 ওজনের দিকে লক্ষ্য রাখুন গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন কমাতে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে চলুন আপনার গর্ভকালীন চেকআপের সময় চিকিৎসক বলে দিবেন কতটুকু ওজন বাড়া আপনার জন্য স্বাভাবিক সে অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুনজরুরি অবস্থা8 কোনো কাজ (যেমন সিঁড়ি দিয়ে উঠা ভারী কিছু আলগানো) এসব করার সময়ে হালকা শ্বাসকষ্ট হলে খেয়াল করুন বিশ্রাম নিলে তা প্রশমিত হয়ে যায় কি না যদি বিশ্রামের পরও ঠিক না হয় অথবা আপনার নিচের এক বা একাধিক লক্ষণ দেখা যায় সেটিকে জরুরি অবস্থা মনে করে দ্রুত চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন—1 তীব্র শ্বাসকষ্ট হলে2 শ্বাসকষ্টের সাথে কাশি হলে3 কথা বলার সময় একটা পূর্ণ বাক্য শেষ করতে না পারলে4 বুক ব্যথার সাথে শ্বাসকষ্ট হলে5 জ্বরের সাথে শ্বাসকষ্ট হলে6 আপনার হাত পায়ের আঙুল ঠোঁট নীল বর্ণ ধারণ করা শুরু করলে7 শ্বাসকষ্টের সাথে মুখ পেট ফুলে গেলে (অ্যালার্জির কারণে এমনটা হতে পারে)8 হঠাৎ করেই শ্বাসকষ্ট শুরু হলে গর্ভাবস্থায় আবেগ ও অনুভূতি অনেক ওঠানামা করে দেখা গেল যেকোনো মুহূর্তে আপনি হাসছেন আবার পর মুহূর্তেই আপনি কাঁদছেন আপনার আবেগ এমন দ্রুত পরিবর্তনকে সহজ কথায় মুড সুইং বলেগর্ভাবস্থায় আবেগ ও অনুভূতি অনেক ওঠানামা করে দেখা গেল যেকোনো মুহূর্তে আপনি হাসছেন আবার পর মুহূর্তেই আপনি কাঁদছেন আপনার আবেগ এমন দ্রুত পরিবর্তনকে সহজ কথায় মুড সুইং বলেপ্রায় প্রত্যেক গর্ভবতী নারীই এমন অনুভূতির মধ্য দিয়ে যান তবে এ ধরনের মুড সুইং অনেক ক্ষেত্রেই সাময়িক এবং গর্ভাবস্থার জন্য ক্ষতিকর নয় গর্ভাবস্থায় একজন মায়ের বেশ কিছু শারীরিক শারীরবৃত্তিক ও মানসিক পরিবর্তন আসে এসব গর্ভাবস্থাজনিত কারণের প্রভাবেই আপনার মুড সুইং হতে পারে যেমন—1 প্রথম ত্রৈমাসিকেহরমোন এর ওঠানামা গর্ভাবস্থায় গর্ভবতী মায়েদের শরীরে বেশ কিছু হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যায় এস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন এমন কিছু হরমোন যেগুলো স্বাভাবিক সময়ে শরীরে থাকলেও গর্ভাবস্থায় এসবের পরিমাণ অনেক বেশি বেড়ে যায় এসব হরমোনের প্রভাবে এসময় মায়েদের মুড সুইং হতে পারে2 ক্লান্তি ও পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব গর্ভাবস্থায় বিশেষ করে প্রথম ত্রৈমাসিকে আপনি যতই ঘুমান না কেন আপনার বেশ ক্লান্ত লাগবে এতে আপনার দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন ঘটতে পারে এর ফলেও আপনার মুড সুইং হতে পারে3 মর্নিং সিকনেস ধারণা করা হয় যে গর্ভাবস্থায় প্রায় ৭০ থেকে ৮০ শতাংশ নারীই মর্নিং সিকনেস এ ভুগে থাকেন মর্নিং সিকনেস আপনার শরীরের বেশ কিছু শারীরিক পরিবর্তনের পাশাপাশি মানসিক পরিবর্তনও আনতে পারে বমি বমি ভাবের কারণে শারীরিক অস্বস্তি তৈরি হলে তা আপনার মানসিক অবস্থা বা মুড কেও প্রভাবিত করতে পারে ফলে দেখা দিতে পারে মুড সুইং4 দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে শারীরিক পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় শরীরের পরিবর্তন অনেক গর্ভবতী মা উপভোগ করলেও অনেক মা নিজের শরীরের পরিবর্তনকে মেনে নিতে পারেন না এ থেকেও অনেকসময় মনমেজাজের পরিবর্তন বা মুড সুইং হতে পারে বিশেষত যে সব মায়েরা জীবনের কোনো সময় শারীরিক গঠন নিয়ে কটু কথা শুনেছেন বা কোনো কারণে শারীরিক গঠন নিয়ে হীনমন্যতায় ভুগেছেন তাদের গর্ভাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তনের প্রভাবে মুড সুইং হতে পারে5 পরীক্ষা নিরীক্ষা গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে গর্ভের শিশুর অনেক ধরনের পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় এসব পরীক্ষার ফলাফল নিয়েও অনেক মায়েরা দুশ্চিন্তা করেন এ থেকেও মুড সুইং হতে পারে6 তৃতীয় ত্রৈমাসিকে দুশ্চিন্তা অনেকসময় প্রথম বারের মতো মা হওয়া নিয়ে অথবা প্রথম শিশুর সাথে অনাগত শিশুর সম্পর্ক নিয়ে অনেক মা দুশ্চিন্তা করে থাকেন পাশাপাশি প্রসব বা ডেলিভারি নিয়েও অনেক মা ভয়ে থাকেন এসব ভীতি ও দুশ্চিন্তা থেকেও আপনার মুড সুইং হতে পারে মুড সুইং গর্ভাবস্থার জন্য খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা তারপরও এটি আপনার দৈনন্দিন কাজে হয়তো কিছুটা ব্যাঘাত ঘটাতে পারে নিচের কিছু সহজ উপায় অবলম্বন করে আপনি মুড সুইং এর সমস্যা অনেকটাই এড়িয়ে চলতে পারেন—১ স্বাস্থ্যকর খাওয়া দাওয়া করুন আপনি যখন ক্ষুধার্ত থাকবেন তখন স্বাভাবিকভাবেই আপনার মনমেজাজ কিছুটা বিক্ষিপ্ত থাকতে পারে কাজেই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ করুন কোনো বেলার খাবার বাদ দিবেন না এতে করে আপনার মস্তিষ্ক প্রয়োজনীয় পুষ্টি পাবে এবং ফলে মনমেজাজও ঠান্ডা থাকবে২ পর্যাপ্ত শারীরিক ব্যায়াম করুন ব্যায়ামকে অনেকসময় স্ট্রেস রিলিভার ও মুড বুস্টার বলা হয় আপনার গর্ভাবস্থায় মুড সুইং কিংবা মন খারাপ হলে হালকা ব্যায়াম বা হাঁটাহাঁটি করলে আপনার ভালো লাগতে পারে হাঁটাহাঁটি বা ব্যায়াম করতে ঘরের বাইরে বের হলে বাইরের আলো বাতাস আপনার মনকে প্রশান্তি দিবেব্যায়াম আমাদের শরীরে বিভিন্ন স্ট্রেস হরমোনের মাত্রা কমাতে সাহায্য করে এর পাশাপাশি ব্যায়াম এর ফলে আপনার শরীর থেকে এন্ডোরফিন নামের হরমোন নির্গত হয় এই হরমোন প্রাকৃতিকভাবে পেইনকিলার হিসেবে কাজ করে আর মুড ভালো করতে সহায়তা করে তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম আপনার মন ভালো রাখতে সহায়তা করবে৩ শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম করুন উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম আমাদের মানসিক চাপ বা স্ট্রেস কমাতে সাহায্য করে এই ব্যায়ামটি শুয়ে চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারেব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেনশুয়ে থাকলে পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন হাতের তালু ওপরের দিকে অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুনচেয়ারে বসে থাকলে দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন দাঁড়িয়ে থাকলে পা দুটো সমানভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে ফাঁকা জায়গা রেখে আরামদায়ক ভাবে বসুনএবার লম্বা করে শ্বাস নিন খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিনতারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তেনিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিন আর শ্বাস ছাড়ুন তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন৪ ঘুমকে প্রাধান্য দিন গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় ঘুম শরীরের জন্য অপরিহার্য একজন সুস্থ ও স্বাভাবিক প্রাপ্তবয়স্ক মানুষের জন্য দৈনিক ৭–৯ ঘন্টা ঘুমকে আদর্শ ধরা হয় এর চেয়ে কম ঘুম হলে সেটি আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে একটানা বেশিক্ষণ ঘুমোতে সমস্যা হলে রাতের ঘুমের পাশাপাশি প্রয়োজনে দিনের বেলাও কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারেনচেষ্টা করুন ঘুমের একটি রুটিন মেনে চলতে প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করবেন খুব বেশি অথবা খুব কম না ঘুমিয়ে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন ঘুমানোর জন্য সঠিক পরিবেশ তৈরি করুন ঘুমাতে যাওয়ার আগে চাকফি বা ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকুনগর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় ও খাবার খাওয়া উচিত নয় অতিরিক্ত ক্যাফেইন খেলে সেটি গর্ভের শিশুর ওজন কম হওয়া এবং সময়ের আগে জন্মানোসহ নানান ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে প্রিয়জনের সাথে কথা বলুন আপনার পরিবার ও কাছের মানুষের সাথে নিজের অনুভূতি সম্পর্কে কথা বলুন তাদের জানান আপনি কিসের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছেন আপনার মুড সুইং জনিত পরিবর্তনের জন্য তাদের আগে থেকেই জানান প্রয়োজনে আপনার পরিচিত অন্য গর্ভবতী মায়েদের সাথে কথা বলুনমর্নিং সিকনেস এর জন্য প্রস্তুত থাকুন গর্ভাবস্থায় মর্নিং সিকনেস এমন একটি সমস্যা যা কোনো সতর্ক ছাড়াই চলে আসে তাই এটির জন্য প্রস্তুত থাকুন সবসময় নিজের সাথে একটা পলিথিন ব্যাগ রাখুন কোনো গন্ধ বা খাবার যদি আপনাকে ট্রিগার করে সেটি এড়িয়ে চলুন গর্ভাবস্থায় ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করেও মুড সুইং থেকে প্রতিকার না পেলে এবং নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখা গেলে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন—1 আপনি বিষণ্ণতা বোধ করলে2 আপনার ঘুমাতে সমস্যা হলে3 আপনার খেতে সমস্যা হলে4 আপনার দৈনন্দিন কাজে বিঘ্ন ঘটলে5 আপনার মুড সুইং এর সমস্যা দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বাড়তে থাকলে প্রসবের সময় হয়েছে কি না তা বোঝার কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো যোনিপথে মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসা মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসা মানেই প্রসব শুরু হয়ে যাচ্ছে এমনটা নয় তবে এটি চিনতে পারা প্রসবের প্রস্তুতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ প্রসবের সময় হয়েছে কি না তা বোঝার কিছু সুনির্দিষ্ট লক্ষণ রয়েছে তার মধ্যে একটি হলো যোনিপথে মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসা মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসা মানেই প্রসব শুরু হয়ে যাচ্ছে এমনটা নয় তবে এটি চিনতে পারা প্রসবের প্রস্তুতির জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ মিউকাস প্লাগ বলতে জেলির মতো ঘন স্রাবের একটি থোকাকে বুঝায় যা গর্ভাবস্থায় আপনার জরায়ুমুখে জমা হয় এবং এর বাইরের মুখটিকে বন্ধ করে রাখে এই স্রাবের কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকে যা একে স্বাভাবিক স্রাবের চেয়ে আলাদা করে আপনার সন্তান জরায়ুর ভেতর মোটামুটি জীবাণুমুক্ত একটি পরিবেশে বড় হয় মিউকাস প্লাগের কাজ হলো যোনি বা এর বাইরের জীবাণু ও ইনফেকশন থেকে জরায়ুমুখকে এবং সেই সাথে গর্ভের সন্তানকে সুরক্ষা দেওয়া এই মিউকাস প্লাগ এমনভাবে তৈরি যাতে এটি গর্ভের ভেতরে জীবাণুর বিস্তার প্রতিরোধ করতে পারে এবং জরায়ুমুখ দিয়ে জীবাণু প্রবেশে বাঁধা দিতে পারে এসব জীবাণু গর্ভে প্রবেশ করলে গর্ভের শিশুর অকাল প্রসবের ঝুঁকি বাড়াতে পারে গবেষণায় দেখা যায় প্রায় ২৫ শতাংশ অকাল প্রসবের পেছনে এধরণের ইনফেকশন ভূমিকা রাখে সন্তান প্রসবের জন্য যখন জরায়ুমুখ প্রসারিত হতে বা বড় হতে শুরু করে তখন আপনার স্রাবের থোকা বা মিউকাস প্লাগ যোনিপথে বের হয়ে আসে সাধারণত গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহের পর জরায়ুমুখ প্রসারিত হতে শুরু করে তাই সাধারণত গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহের পর জরায়ুমুখে থাকা মিউকাস প্লাগ প্রসবের রাস্তা দিয়ে বের হয়ে আসেতবে মিউকাস প্লাগ বের হওয়ার পর প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হতে আরও অনেক সময় লাগতে পারে আবার কারো ক্ষেত্রে প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরও মিউকাস প্লাগ বের হতে পারে তবে কোনো কারণে ৩৭ সপ্তাহের আগে যোনিপথে মিউকাস প্লাগ বেরিয়ে আসলে তা অকাল প্রসবের লক্ষণ হতে পারে তাই এমনটা হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে গর্ভাবস্থায় মিউকাস প্লাগ যেসব কারণে বের হয়ে যেতে পারে তার মধ্যে রয়েছে—জরায়ুমুখের প্রসারণ প্রসবের সময় ঘনিয়ে আসলে জরায়ুমুখ প্রসারিত হতে শুরু করে জরায়ুমুখের প্রসারণের সাথে সাথে মিউকাস প্লাগ জরায়ুমুখ থেকে নেমে যোনিতে চলে আসে ফলে যোনিপথে নির্গত স্রাবের পরিমাণ হঠাৎ স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায় আবার অনেকের ক্ষেত্রে পুরো মিউকাস প্লাগ বা স্রাবের থোকাটি একবারেই বেরিয়ে আসতে পারে জরায়ুমুখের অস্বাভাবিকতা বা সার্ভাইকাল ইনসাফিশিয়েন্সি আপনার জরায়ু কিংবা জরায়ুমুখে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা থাকলে তা অনেকসময় জরায়ুর ভেতরে ফিটাস বা শিশুটিকে ধরে রাখতে পারে না এমন অবস্থায় জরায়ুমুখে থাকা মিউকাস প্লাগ কিংবা জরায়ুর ভেতরে থাকা শিশু অনেকসময় সময়ের আগেই বেরিয়ে আসতে পারেসহবাস গর্ভাবস্থায় সহবাস ক্ষতিকর নয় তবে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে সহবাসের ফলে মিউকাস প্লাগ ছুটে আসার আশঙ্কা থাকে ৩৭ সপ্তাহের পরে মিউকাস প্লাগ বের হয়ে আসলে সেটি সাধারণত কোনো সমস্যা তৈরি করে না তবে তার আগে হয়ে থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবেজরায়ুমুখের পরীক্ষা গর্ভাবস্থায় জরায়ুমুখ পরীক্ষা করার সময় অসাবধানতাবশত কখনো কখনো স্রাবের থোকা বেরিয়ে আসতে পারে তবে সচরাচর এমনটা হয় না তাই এ নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা করার কোনো প্রয়োজন নেই মিউকাস প্লাগ দেখতে কিছুটা স্বাভাবিক স্রাবের মতো এর রঙ পানির মতো পরিষ্কার অথবা সাদা কিংবা হলদে হতে পারে তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এটি হালকা গোলাপিও হতে পারে অথবা সাদার সাথে কিছুটা লালচে ভাব থাকতে পারে এর কারণ হলো জরায়ুমুখ প্রসারিত হতে শুরু করলে অনেকসময় কিছুটা রক্তপাত হতে পারে যা এর সাথে মিশে যায়তবে হালকা লালচে অথবা গোলাপি ভাবের পরিবর্তে যদি স্রাব টকটকে লাল হয়ে থাকে বা বেশি রক্ত মিশ্রিত বলে মনে হয় সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে রক্ত বের হওয়া গুরুতর কোনো সমস্যার (যেমন গর্ভফুলের অকাল ছুটে আসার বা প্ল্যাসেন্টাল এবরাপশন) লক্ষণ হতে পারেকিছু গর্ভবতী নারীর ক্ষেত্রে একসাথে পুরো মিউকাস প্লাগ বের হয়ে আসে আবার অনেকের ক্ষেত্রে স্রাব সময় নিয়ে ধীরে ধীরে বের হয় যার ফলে অনেকে মিউকাস প্লাগ বের হওয়ার বিষয়টা খেয়াল নাও করতে পারেন তবে এতে দুশ্চিন্তার কোনো কারণ নেই আপনার গর্ভাবস্থার পুরো সময় জুড়েই যোনিপথ দিয়ে কিছু স্রাব বের হওয়াটা স্বাভাবিক এই স্রাব সাধারণত পাতলা ও সাদা বা হলদে হয়ে থাকে অন্যদিকে মিউকাস প্লাগ যা প্রসব প্রক্রিয়ায় জরায়ুমুখ বড়ো হওয়ার ফলে বের হয় সেটি অনেক ঘন হবে এবং পরিমাণেও বেশি হবে যদি গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহের পর স্রাবের থোকা বের হয় তাহলে চিন্তিত হওয়ার কোনো কারণ নেই মিউকাস প্লাগ বের হওয়ার কয়েক দিন অথবা সপ্তাহ পরে সক্রিয় প্রসব শুরু হতে পারে আবার প্রসব প্রক্রিয়ার মধ্যেই মিউকাস প্লাগ বের হয়ে আসতে পারে তাই শান্ত ও সচেতন থেকে অপেক্ষা করাই শ্রেয়মিউকাস প্লাগ বের হয়ে যাওয়ার পরেও আপনার জরায়ুমুখে স্রাব তৈরি হতে থাকে যা গর্ভের সন্তানের সুরক্ষা অটুট রাখে তাই এমন অবস্থায় আপনি স্বাভাবিক জীবনযাপন—এমনকি সহবাসও করতে পারেনতবে মিউকাস প্লাগের রঙ গন্ধ ও ঘনত্ব খেয়াল করতে হবে যদি স্রাবের রঙ স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি লাল হয়ে থাকে সেটা যোনিপথে রক্তক্ষরণের লক্ষণ হতে পারে আবার স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলুদ অথবা সবুজ কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত হলে সেটি ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে গর্ভকালীন সময়ে অনেক নারীকে চুলকানির সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় সাধারণত গর্ভকালীন শারীরিক ও হরমোন জনিত নানান পরিবর্তনের কারণে এমন চুলকানি হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পেটে চুলকানি হলেও পেটের পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য স্থানেও চুলকানি হতে পারে গর্ভকালীন সময়ে অনেক নারীকে চুলকানির সমস্যায় ভুগতে দেখা যায় সাধারণত গর্ভকালীন শারীরিক ও হরমোন জনিত নানান পরিবর্তনের কারণে এমন চুলকানি হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পেটে চুলকানি হলেও পেটের পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য স্থানেও চুলকানি হতে পারে কিছু সহজ কৌশল অনুসরণ করার মাধ্যমে গর্ভকালীন এই চুলকানি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে তবে কিছু ক্ষেত্রে চুলকানির সাথে এমন কিছু লক্ষণ থাকতে পারে যা জটিল কোনো রোগ নির্দেশ করে সেক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া প্রয়োজন গর্ভাবস্থায় যেকোনো সময়েই আপনার পেট চুলকানির সমস্যা শুরু হতে পারে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে পেট চুলকানির সমস্যা বেশি দেখা যায় পেট চুলকানোর পাশাপাশি শরীরের অন্যান্য জায়গাতেও (যেমন পায়ু বা পায়খানার রাস্তার চারিদিকে যৌনাঙ্গের আশেপাশে ও স্তনে) চুলকানির সমস্যা হতে পারে আবার কারও কারও সারা শরীরে চুলকানি থাকতে পারে গর্ভাবস্থায় মূলত তিনভাবে চুলকানি হতে পারে—সাধারণত গর্ভকালীন নানান শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে চুলকানি হতে পারে গর্ভধারণের আগে থেকে কোনো চর্মরোগ কিংবা চুলকানির সমস্যা থাকলে গর্ভাবস্থায় সেটা বেড়ে গিয়ে ভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারে যেমন এটোপিক একজিমা গর্ভাবস্থার সাথে সম্পর্কিত বিশেষ কিছু রোগ ও স্বাস্থ্য জটিলতা চুলকানি সৃষ্টি করতে পারেবেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভধারণ ছাড়া এই চুলকানির পেছনে নির্দিষ্ট কারণও খুঁজে পাওয়া যায় না মোটা দাগে ধারণা করা হয় যে এসময়ে কিছু হরমোনের পরিমাণ বেড়ে যাওয়ায় গর্ভাবস্থায় চুলকানি হয়উল্লেখ্য শরীরের অন্যান্য অংশের তুলনায় পেটে চুলকানির সমস্যা বেশি হয় গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে পেটের আকারও বড় হয় এতে পেটের ত্বক অনেকটা প্রসারিত হয়ে সেখানে টান পড়ে ফলে সেখানকার নার্ভে কিছু পরিবর্তন হয়ে পেটে চুলকানি হতে পারেকিছু ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় চুলকানির সাথে অন্য কোনো চর্মরোগ অথবা লিভারের রোগের সম্পর্ক থাকতে পারে এসব ক্ষেত্রে সাধারণত পেট চুলকানির পাশাপাশি আরও কিছু লক্ষণ দেখা দেয় এমন হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হয় এজন্য চুলকানির সাথে সাথে আপনার অন্য কোনো সমস্যা হচ্ছে কি না সেদিকে খেয়াল রাখুন আর্টিকেলের পরবর্তী অংশে এই রোগগুলোর লক্ষণ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে গর্ভাবস্থায় চুলকানিতে ভোগা ৬০ নারীর ক্ষেত্রেই শরীরে কোনো দানা র‍্যাশ বা ফুসকুড়ি হয় না তবে সাধারণ চুলকানি মা ও গর্ভের শিশুর জন্য তেমন জটিলতা সৃষ্টি না করলেও তা অনেক গর্ভবতীর জন্য ভোগান্তি ও বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়ায়নিচে ৮টি কার্যকর সমাধান তুলে ধরা হয়েছে যা আপনাকে ঘরোয়াভাবেই চুলকানি উপশমে সাহায্য করতে পারে—১ চুলকানির স্থানে ভেজা কাপড় অথবা বরফ দেওয়াভেজা কাপড় ও বরফ চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে এজন্য যে স্থানে চুলকাচ্ছে তার ওপর একটি ভেজা কাপড় অথবা বরফ মোড়ানো কাপড় দিয়ে রাখতে পারেন এভাবে ৫–১০ মিনিট আলতো করে চেপে ধরে রাখুন এতেও কাজ না হলে চুলকানি না কমা পর্যন্ত এভাবে আরও কিছুক্ষণ ধরে রাখতে পারেন২ নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করাশুষ্ক ত্বকের চুলকানি অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে শরীরে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা ধরে রাখার মাধ্যমে শুষ্কতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য আপনি ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেনময়েশ্চারাইজিং ক্রিম অথবা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করতে পারলে বেশি ভালো হয়[৬] হাতের কাছে না পেলে ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করতে পারেন এক্ষেত্রে সুগন্ধিবিহীন ময়েশ্চারাইজারগুলো বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন কারণ অনেকসময় সুগন্ধি প্রসাধনসামগ্রী চুলকানি রিঅ্যাকশন ঘটিয়ে চুলকানি বাড়িয়ে দিতে পারেগোসল করার পর পরই তোয়ালে দিয়ে হালকা করে শরীর মুছে ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে ফেলুন এটি শরীরের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে মুখ ধোয়ার পরেও এভাবে ময়েশ্চাইরাইজার লাগাতে পারেনচুলকানি কমাতে দিনে দুইবার ভারী ধরনের ময়েশ্চারাইজার লাগানো ভালো সারাদিনে অন্তত গোসলের পরে একবার এবং রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে একবার ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেনদামি ময়েশ্চারাইজার হলেই সেটা বেশি কার্যকরী হবে এরকম ভাবার কোনো কারণ নেই আপনি যেকোনো ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন সেই সাথে ময়েশ্চারাইজার কেনার আগে প্যাকেটের গায়ে লাগানো লোগো মেয়াদোত্তীর্ণ হওয়ার তারিখ ও ব্যবহৃত উপাদানগুলোর নাম ভালো করে দেখে কেনার চেষ্টা করুন৩ মেনথল অথবা ক্যালামাইনযুক্ত ক্রিমলোশন লাগানোচুলকানির স্থানে মেনথল অথবা ক্যালামাইনযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এগুলো গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা নিরাপদ এগুলো চুলকানি থেকে কিছুটা আরাম দিতে পারে৪ গন্ধহীন ও মৃদু টয়লেট্রিজ ব্যবহার করাসাবান বডি ওয়াশ ক্রিম লোশন ও ময়েশ্চারাইজারে সাধারণত সুগন্ধি মেশানো থাকে এসব সুগন্ধিযুক্ত টয়লেট্রিজ ব্যবহারে কারও কারও চুলকানি বেড়ে যেতে পারে তাই গন্ধহীন সাবান ক্রিম ও লোশন ব্যবহার করার চেষ্টা করুন এতে চুলকানির সমস্যা কিছুটা কমতে পারে সাবান ও বডিওয়াশের ক্ষেত্রে গন্ধহীন এবং মৃদু কম ক্ষারযুক্ত পণ্যটি বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন৫ অতিরিক্ত গরম পানির ব্যবহার এড়িয়ে চলাবেশি গরম পানি ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে যা থেকে চুলকানি হতে পারে এজন্য গোসলের সময়ে বেশি গরম পানির ব্যবহার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন খুব গরম পানির পরিবর্তে কুসুম গরম পানি বেছে নিন চেষ্টা করুন ১০ মিনিটের মধ্যে গোসল সেরে ফেলতে গরম পানির পাশাপাশি খুব গরম খুব ঠাণ্ডা কিংবা খুব শুষ্ক আবহাওয়া এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন এগুলো চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে৬ সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা পোশাক পরাজামাকাপড়ের সাথে বারবার ত্বকের ঘষা লাগলে ত্বকে জ্বালাপোড়া হয়ে চুলকানি বেড়ে যেতে পারে এজন্য এমন কোনো ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক পোশাক বেছে নিন যেটা পরলে ত্বকের সাথে কম ঘষা লাগবেসিনথেটিক কাপড়ের তৈরি পোশাকের পরিবর্তে সুতির পোশাক বেছে নিন সুতি কাপড়ের ভেতর দিয়ে বাতাস চলাচল করতে পারে ফলে আপনার শরীরে ভালোমতো বাতাস লাগবে এতে আপনি বেশি আরাম পেতে পারেন৭ ওটস মেশানো পানি ব্যবহার করাচুলকানি নিয়ন্ত্রণের একটি ভালো পদ্ধতি হচ্ছে ওটস মেশানো মিশ্রণ দিয়ে গোসল করা একে ইংরেজিতে ওটমিল বাথ বলা হয় বিদেশে দোকানে কিনতে পাওয়া যায় আপনি নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করে বাড়িতেও বানিয়ে নিতে পারেন—প্রথমে ওটস খুব মিহি গুঁড়া করুন গুঁড়া করার জন্য ব্লেন্ডার গ্রাইন্ডার কফি গুঁড়া করার মেশিন অথবা এই ধরনের যেকোনো মেশিন ব্যবহার করতে পারেন এক্ষেত্রে সবচেয়ে মিহি গুঁড়া বানানোর সেটিং বেছে নিনওটস ভালোভাবে গুঁড়া হয়েছে কি না সেটি পরীক্ষা করে দেখুন এজন্য এক টেবিল চামচ ওটস গুঁড়া নিয়ে তা এক গ্লাস গরম পানিতে মেশান পানিতে ভালোভাবে মিশে দেখতে দুধের মতো তরল তৈরি হয়ে গেলে বোঝা যাবে যে ওটসগুলো ভালোভাবে গুঁড়া হয়েছেযদি পানি দুধের মতো না হয়ে যায় তাহলে ওটস আরও ভালোভাবে গুঁড়া করুন তারপর আবার ভালোভাবে গুঁড়া হয়েছে কি না সেটি পরীক্ষা করার জন্য পানিতে মেশান এভাবে যখন ওটস সাথে সাথে পানি শুষে নিয়ে দেখতে দুধের মতো হয়ে যাবে তখন বুঝতে হবে যে ওটস ব্যবহারের জন্য তৈরিযদি বাথটাব থাকে ওটসগুলো বাথটাবের কুসুম গরম পানিতে ঢেলে দিন খেয়াল রাখবেন ওটস পানিতে ঢালার সময়ে যেন কল বা ট্যাপ থেকে চলন্ত পানি বাথটাবে পড়তে থাকে এতে করে ওটসের গুঁড়া পানির সাথে ভালোভাবে মিশে যাবে পানি ভালোভাবে নাড়িয়ে ওটসের গুঁড়া পুরো পানিতে মিশিয়ে দিন কোনো দলা ছাড়া পুরোপুরি মিশে গেলেই এই ওটস মেশানো পানি গোসলের উপযোগী হয়ে যাবে এতে সাবান শাওয়ার জেল অথবা বডি ওয়াশ ব্যবহার করার কোনো প্রয়োজন নেইএরপর বাথটাবে ওটস মেশানো পানিতে ১৫–২০ মিনিট শরীর ডুবিয়ে রাখতে হবে ওটস মেশানো পানিতে শরীর বেশিক্ষণ ডুবিয়ে রাখলে ত্বক কিছুটা শুষ্ক হয়ে যায় তাই এই পানি দিয়ে বেশিক্ষণ ধরে শরীর ভিজিয়ে রাখবেন না সবশেষে ওটস মেশানো পানি থেকে উঠে শরীরের যেসব স্থানে চুলকানি হয় সেসব স্থান হাত দিয়ে আলতো করে ঘষে নিতে পারেন উল্লেখ্য ওটস মেশানো পানি থেকে উঠে আলাদা করে সারা শরীর ধুয়ে ফেলার প্রয়োজন নেই তবে আপনি চাইলে বা অস্বস্তি লাগলে কুসুম গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলতে পারেন যদি বাথটাব না থাকে যদি আপনার বাসায় বাথটাব না থাকে তাহলে একটি পাত্রে কুসুম গরম পানির সাথে মিহি ওটস গুঁড়া একটু ঘন করে মেশান এরপর মিশ্রণটি একটি মসলিন জাতীয় কাপড়ে নিয়ে তা দিয়ে আপনার চুলকানির স্থানে আলতোভাবে স্পর্শ করুন এভাবেই ৩০ মিনিট মিশ্রণটি ত্বকের ওপর রেখে দিন এরপর আলাদা করে শরীর ধুয়ে ফেলার প্রয়োজন নেই তবে আপনি চাইলে বা অস্বস্তি লাগলে একটি পরিষ্কার কাপড় ও কুসুম গরম পানি দিয়ে ওটস এর গুঁড়াগুলো মুছে ফেলতে পারেন৮ চুলকানোর পরিবর্তে বিশেষ নিয়ম মেনে চলাচুলকানির তাড়না আসলে সেটি দমিয়ে রাখা কঠিন কিন্তু চুলকানি ওঠা স্থানে চুলকালে কয়েক মুহূর্ত আরাম লাগলেও তা চুলকানির তাড়নাকে বাড়িয়ে দেয় এরপর আবার চুলকাতে ইচ্ছে করে এভাবে অনেক ক্ষেত্রেই চুলকানি একটা চক্রের মতো চলতে থাকে তা ছাড়া চুলকানোর ফলে ত্বকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষত সৃষ্টি হয় এসবের ভেতর দিয়ে জীবাণু ঢুকে ত্বকে ইনফেকশন ঘটাতে পারেতাই চুলকানি উঠলেও ত্বক না চুলকানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন চুলকানোর পরিবর্তে আঙুলের ত্বক দিয়ে চুলকানি ওঠা স্থানটি আলতো করে চেপে চেপে নিন ত্বকে আঘাত ও ইনফেকশন এড়াতে নখ ছোটো করে কেটে নিন এবং সবসময় মসৃণ ও পরিষ্কার রাখুন৯ মানসিক চাপ মোকাবেলামানসিক চাপ এড়িয়ে চলুন মানসিক চাপ চুলকানি বাড়িয়ে দিতে পারে গর্ভাবস্থায় পেটে বা শরীরে হালকা চুলকানি হলে তা সাধারণত আপনার কিংবা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর নয় তবে নিচের লক্ষণগুলোর কোনোটি দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরি—1 একটা নির্দিষ্ট সময়ে (সন্ধ্যার পরে) চুলকানি বেড়ে গেলে2 চুলকানির কারণে অনেক অস্বস্তি হলে3 শরীরের অন্যান্য জায়গায় চুলকানি হলেও হাত ও পায়ের তালুতে বেশি চুলকালে4 চুলকানির সাথে অন্য কিছু লক্ষণ দেখা গেলে5 একটানা অনেকদিন ধরে চুলকানি থাকলেএর কারণ হলো এগুলো গর্ভাবস্থার বিশেষ লিভারের রোগ অথবা অন্য কোনো চর্মরোগের লক্ষণ হতে পারে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করালে তা মা ও গর্ভের শিশুর জন্য মারাত্মক হতে পারে এই রোগের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—1 অনেক বেশি চুলকানি হওয়া বিশেষ করে হাতের তালু ও পায়ের পাতায় তবে পুরো শরীরেও এমন চুলকানি হতে পারে2 সন্ধ্যায় ও রাতে চুলকানি বেড়ে যাওয়া অতিরিক্ত চুলকানির ফলে চামড়া উঠে যেতে পারে3 গাঢ় রঙের প্রস্রাব এবং ফ্যাকাসে পায়খানা হওয়া4 কিছু ক্ষেত্রে জন্ডিস হওয়া অর্থাৎ ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলুদাভ হয়ে যাওয়াডাক্তারি ভাষায় একে বলা হয় ইন্ট্রাহেপাটিক কোলেস্ট্যাসিস এই রোগটি কেবল গর্ভাবস্থাতেই হয় লিভারের এই রোগ খুব গুরুতর রূপ ধারণ করতে পারে এতে অকাল প্রসব ও মৃতপ্রসবের ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে গর্ভাবস্থায় এমন কিছু নির্দিষ্ট চর্মরোগ হতে পারে যা সাধারণ অবস্থায় দেখা দেয় না এসব চর্মরোগের লক্ষণগুলোর মধ্যে কিছু মিল থাকলেও র‍্যাশ ও রোগের ধরনে বেশ কিছু পার্থক্য রয়েছে কমন লক্ষণের মধ্যে রয়েছে চুলকানির সাথে লাল লাল ফুসকুড়ি বা র‍্যাশ হওয়াএমন হলে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে তার পরামর্শ অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন কেননা এসবের মধ্যে কিছু রোগ থেকে মা ও বিশেষ করে গর্ভের শিশুর মারাত্মক জটিলতায় ভোগার সম্ভাবনা রয়েছেচুলকানির সাথে সৃষ্টি হওয়া অন্য উপসর্গগুলো কোন রোগের কারণে হতে পারে এবং তাতে মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি কেমন তা জানতে নিচের ছকটি দেখুন[১৩]—গর্ভকালীন পেমফিগয়েডলক্ষণবুকেপেটে অথবা নাভির চারপাশে ছোটো ছোটো লাল র‍্যাশ ফোসকা বা ফুসকুড়ি সৃষ্টি হয় পরবর্তীতে এসব র‍্যাশ ও ফুসকুড়ি সারা দেহে ছড়িয়ে যায় পরবর্তীতে ফোসকাগুলো তরলে ভরে গিয়ে টানটান হয়ে উঠতে পারেঝুঁকিশিশুর সময়ের আগেই জন্মগ্রহণ করার ও আকারে ছোটো হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় মায়ের পরবর্তী গর্ভাবস্থাতেও গর্ভকালীন পেমফিগয়েড হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়পলিমরফিক ইরাপশন অফ প্রেগন্যান্সিলক্ষণপেটের ফাটা দাগের ওপরে খুব চুলকায় এমন লাল লাল ছোটো র‍্যাশ হয় তবে নাভির চারপাশের ত্বকে সাধারণত কোনো র‍্যাশ থাকে না ১–২ দিন পরে র‍্যাশগুলো হাতেপায়ে বুকেপিঠে ছড়িয়ে যায় এরপর একত্র হয় উঁচু উঁচু র‍্যাশ তৈরি করে ত্বক ফর্সা হলে লাল ফুসকুড়ির চারপাশ দিয়ে সাদা রিংয়ের মতো দাগ তৈরি হয়ঝুঁকিমায়ের চুলকানি ছাড়া মা ও শিশুর তেমন সমস্যা হয় নাপাস্টুলার সোরিয়াসিস অফ প্রেগন্যান্সিলক্ষণলাল লাল র‍্যাশ হয় র‍্যাশের মধ্যে পুঁজ থাকে সাধারণত বুকপেট হাত ও পায়ে এমন ফুসকুড়ি হয় নখ তার নিচের চামড়া থেকে কিছুটা উঠে উঠে যেতে পারে কারও কারও নখ সামান্য দেবেও যেতে পারেঝুঁকিগর্ভপাত মৃতপ্রসব সময়ের আগেই জন্মগ্রহণ করার এবং আকারে ছোটো সম্ভাবনা থাকে প্রসবের পরে মায়ের এই রোগের তীব্রতা বেড়ে যেতে পারেঅ্যাটোপিক ইরাপশন অফ প্রেগন্যান্সিলক্ষণমুখে ঘাড়ে বুকের ওপরের অংশে কনুইয়ে হাতে ও পায়ে একজিমার মতো র‍্যাশ হয় কখনো কখনো ত্বক অনেক বেশি শুষ্ক হয়ে পড়েঝুঁকিগর্ভের শিশুর তেমন সমস্যা হয় না মায়ের পরবর্তী গর্ভাবস্থাতেও এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় ঘরোয়া সমাধানগুলো অনুসরণের পরেও চুলকানির সমস্যা না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার সঠিকভাবে রোগ নির্ণয় করে লক্ষণ অনুযায়ী উপযুক্ত পরামর্শ ও ঔষধ দিয়ে সাহায্য করবেন চুলকানির সমস্যায় সাধারণত যেসব ঔষধ ব্যবহার হয় সেগুলো হলো—এমোলিয়েন্ট অয়েন্টমেন্ট ক্রিম ও লোশন অ্যান্টিহিস্টামিন ট্যাবলেট স্টেরয়েড মলম ও ট্যাবলেটএসবের মধ্যে এমোলিয়েন্ট ছাড়া কোনো ঔষধ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনোক্রমেই ব্যবহার করবেন না কেননা এসব ঔষধের বিভিন্ন ধরন ও ডোজ থাকে যার মধ্যে অনেকগুলো গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ নয় তা ছাড়া স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ প্রয়োজনের চেয়ে দীর্ঘ সময় ধরে এবং অতিরিক্ত ডোজে ব্যবহার করলে সেটি আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো আপনি জ্ঞান হারাতে পারেন কিংবা জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা অনুভব করতে পারেন বিশেষ করে বসা থেকে হুট করে উঠে দাঁড়ালে অথবা চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে এমনটা হতে পারেগর্ভাবস্থায় কখনো কখনো আপনি জ্ঞান হারাতে পারেন কিংবা জ্ঞান হারানোর মতো অবস্থা অনুভব করতে পারেন বিশেষ করে বসা থেকে হুট করে উঠে দাঁড়ালে অথবা চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলে এমনটা হতে পারেগর্ভাবস্থায় জ্ঞান হারানো সাধারণত দুশ্চিন্তার কিছু না হলেও কোন কোন ক্ষেত্রে এর জন্য চিকিৎসা নিতে হবে তা জেনে রাখা জরুরি আপনার ব্রেইনে যখন পর্যাপ্ত পরিমাণে রক্ত পৌঁছায় না তখন অক্সিজেনের ঘাটতি দেখা দেয় এটি থেকে আপনি অজ্ঞান হতে পারেন গর্ভাবস্থায় যেসকল কারণে আপনি জ্ঞান হারাতে পারেন সেগুলো হচ্ছে—১ব্লাড প্রেশার বা রক্তচাপ কমে গেলে২ অতিরিক্ত গরম থেকে ৩রক্তে সুগার বা গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ কমে গেলে৪রক্তশূন্যতা থাকলে চিৎ হয়ে শুয়ে থাকলেএ ছাড়া পেটের আকার বেড়ে গেলে তা রক্তনালীর উপর চাপ দেয় ফলে রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয়ে অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন জ্ঞান হারানোর ঠিক আগ মুহূর্তে আপনার যে লক্ষণগুলো দেখা দিতে পারে—১মাথা ঘুরানো২স্বাভাবিকের চেয়ে দ্রুত অথবা গভীর শ্বাস নেওয়া হঠাৎ করে অনেক বেশি ঘাম হওয়া এবং হাতপা ঠান্ডা হয়ে আসা কানে ঝিঁঝিঁ করা বা চিকন বাঁশির মতো শব্দ শোনা৩চোখে ঝাপসা দেখা অথবা চোখের সামনে দাগের ন্যায় দেখা৪বমি বমি ভাব বা অসুস্থ বোধ করা৫বারবার হাই তোলা ৬মাথা হালকা অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে ব্রেইন ও হার্ট একই লেভেলে থাকে তাই হার্টকে ব্রেইন পর্যন্ত রক্ত পাম্প করতে খুব একটা বেগ পেতে হয় না ফলে ২০ সেকেন্ডের মধ্যেই সাধারণত জ্ঞান ফিরে আসেজ্ঞান ফিরে আসার পর কিছুক্ষণ পর্যন্ত বিভ্রান্ত লাগাটা স্বাভাবিক এ ছাড়া ৩০ মিনিট পর্যন্ত আপনার দুর্বল ও ক্লান্ত লাগতে পারে এমনকি অজ্ঞান হওয়ার ঠিক আগ মুহূর্তে আপনি কী করছিলেন তাও মনে না থাকতে পারেএক্ষেত্রে কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিলে এটি ঠিক হয়ে যায় তবে পরবর্তী চেকআপে আপনার চিকিৎসককে অজ্ঞান হওয়ার ঘটনার সম্পর্কে জানাতে হবে আপনার মাথা ঘুরালে অথবা অজ্ঞান হওয়ার মতো অবস্থা হচ্ছে বুঝতে পারলে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন—১আপনার যদি দাঁড়ানো অবস্থায় এমনটা হয় তাহলে কোথাও বসে পড়ুন২বসার পরেও যদি অবস্থার উন্নতি না হয় তাহলে আশেপাশে বিছানা বা সোফা থাকলে একদিকে কাত হয়ে শুয়ে পড়ুন৩আশেপাশের কাউকে জানিয়ে রাখুন যাতে প্রয়োজনে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারে৪আঁটসাঁট বা গরম কাপড় পরা থাকলে খুলে ফেলুন অথবা আলগা করুন যাতে বাতাস চলাচল করতে পারে৫আপনি যেই ঘরে আছেন সেখানটায় বাতাসের চলাচল নিশ্চিত করুন৬আপনি অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন মনে হলে নিজে বেশি হাঁটাহাঁটি না করে অন্য কাউকে ঘরের দরজাজানালা খুলে দিতে বলুন৭পানি পান করুন এবং হালকা নাস্তা জাতীয় খাবার খান অজ্ঞান হয়ে পড়ে গেলে দুর্ঘটনাবশত আপনি আঘাত পেতে পারেন আঘাত গুরুতর হলে তা থেকে অনেকসময় মা ও শিশুর জীবন ঝুঁকির সম্মুখীন হতে পারে সেক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত হাসপাতালের জরুরি বিভাগে নিয়ে যেতে হবেএ ছাড়া গর্ভাবস্থায় জ্ঞান হারানোর সাথে মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকির সম্পর্ক পাওয়া যায় যেমন গর্ভাবস্থায় জ্ঞান হারিয়েছেন এমন মায়েদের ক্ষেত্রে অকাল প্রসব ও শিশুর জন্মগত ত্রুটি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা বেশি থাকতে পারে[১] সন্তান জন্মদানের পরবর্তী বছরে মায়ের হার্টবিট অনিয়মিত হওয়া কিংবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার সমস্যাও কিছুটা বেড়ে যেতে পারেএজন্য যেসব মায়ের গর্ভকালীন সময়ে অজ্ঞান হয়ে যাওয়ার প্রবণতা দেখা দিচ্ছে তাদেরকে গর্ভকালে এবং সন্তান জন্মদানের পর—উভয় সময়েই নিবিড় পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে তবে গর্ভকালে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বেশিরভাগ মাই সাধারণত সুস্থ সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেনকখন চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে অজ্ঞান কিংবা অজ্ঞান ভাব হওয়ার পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলোর কোনোটি থাকলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি— ১যোনিপথ দিয়ে রক্তপাত হলে২ তলপেটে ব্যথা হলে৩ বুকে ব্যথা হলে৪শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে৫বুক ধড়ফড় করলে৬চোখে ঝাপসা দেখলে কিংবা দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন আসলে৭মাথা ব্যথা হলে আপনি যেভাবে অজ্ঞান হওয়া অথবা অজ্ঞানবোধ করা থেকে বাঁচতে পারেনবিছানা থেকে ধীরেসুস্থে নামুন উঠে দাঁড়ানোর আগে বিছানার সাইডে কিছুক্ষণ বসে নিন বসা অবস্থা থেকে উঠতে গেলেও আস্তে ধীরে উঠুন খুব গরম পানিতে গোসল করবেন না গোসলখানা থেকে ধীরেসুস্থে ও সতর্কতার সাথে বের হোন অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকবেন না প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন নিয়মিত ব্যায়াম করার চেষ্টা করুন এতে শরীর ও ব্রেইনে রক্ত চলাচল ভালো হয় চিৎ হয়ে শুয়ে থাকবেন না বিশেষ করে দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে চিৎ হয়ে শোয়া পরিহার করুনএকজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন গর্ভকালীন সময়ের শেষের দিকে এবং প্রসববেদনার সময় পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা ঠিক নয় গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ পর ঘুমানোর সময়েও পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা থেকে বিরত থাকবেন কেননা এভাবে শুয়ে থাকলে মৃত শিশু জন্মানোর সম্ভাবনা বাড়তে পারেএসবের পাশাপাশি কখনোই কোনো বেলার খাবার বাদ দিবেন না—এমনকি যদি আপনার মর্নিং সিকনেস থাকে তাহলেও অল্প অল্প করে নিয়মিত খেয়ে নিন এতে আপনার রক্তে সুগার লেভেল নেমে যাবে না আপনি যদি একজন গর্ভবতী নারীকে অজ্ঞান হয়ে পড়ে যেতে দেখেন তাহলে তাকে নিচে আলতো করে বামদিকে কাত করে শুইয়ে দিন তার বাম পা এসময় বুকের দিকে ভাজ করে রাখুন (ছবিতে দেখুন)ছবি রিকভারি পজিশননিচের লক্ষণগুলো উপস্থিত থাকলে দ্রুত তাকে হাসপাতালে নেওয়ার ব্যবস্থা করুন—১এক মিনিট ধরে ছবিতে দেখানো পজিশনে রাখার পরেও যদি তার জ্ঞান না ফেরে২রোগীর খিঁচুনি হয় অথবা ঝাঁকুনি দিয়ে ৩অজ্ঞান হয়ে পড়ার সময় গুরুতর জখমের শিকার হয় (বিশেষ করে মাথায়)৪এটিই তার প্রথম অজ্ঞান হওয়ার ঘটনা হয় ৫রোগী উচ্চ রক্তচাপের জন্য আগে থেকেই ঔষধ নিয়ে থাকলেএম্বুলেন্স না আসা অথবা জ্ঞান না ফেরা পর্যন্ত রোগীর সাথেই থাকুন গর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে যেসকল পরিবর্তন আসে তার একটি হচ্ছে শরীরের ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না হলেও স্ট্রেচ মার্ক থেকে চুলকানি হতে পারে—যা বেশ অস্বস্তিকর এ ছাড়া অনেকেই মনে করেন স্ট্রেচ মার্ক সৌন্দর্যহানির কারণ এবং এগুলো নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেনগর্ভাবস্থায় একজন নারীর শরীরে যেসকল পরিবর্তন আসে তার একটি হচ্ছে শরীরের ফাটা দাগ বা স্ট্রেচ মার্ক মা ও শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর না হলেও স্ট্রেচ মার্ক থেকে চুলকানি হতে পারে—যা বেশ অস্বস্তিকর এ ছাড়া অনেকেই মনে করেন স্ট্রেচ মার্ক সৌন্দর্যহানির কারণ এবং এগুলো নিয়ে হীনম্মন্যতায় ভোগেন গর্ভকালীন সময়ে একজন মায়ের ওজন বৃদ্ধি পায় একেকজন নারীর ক্ষেত্রে এই বৃদ্ধির পরিমাণ একেক রকম হতে পারে স্বাভাবিকের তুলনায় ওজন বেশি বেড়ে গেলে আপনার শরীর তাড়াতাড়ি প্রসারিত হয় তবে এই প্রসারণের সাথে তাল মিলিয়ে আপনার চামড়া বা ত্বক প্রসারিত হতে পারে না ফলে ত্বকের মাঝের স্তরটিতে অতিরিক্ত টান পড়ে এবং এটি ফেটে যায়গর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তন স্ট্রেচ মার্ক হওয়ার আরেকটি কারণ হতে পারে এই পরিবর্তনের ফলে অনেকসময় আপনার ত্বকের কোলাজেন তন্তু দুর্বল হয়ে যায়কোলাজেন তন্তু হলো ত্বকের একটি উপাদান যা চামড়া বা ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা রক্ষা করে অর্থাৎ একটা নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত চামড়া প্রসারিত হওয়ার পর পুনরায় তাকে পূর্বের অবস্থায় ফেরত আসতে সহায়তা করেকিন্তু কোলাজেন তন্তু দুর্বল হয়ে গেলে তার এই ক্ষমতা কমে আসে ফলে গর্ভাবস্থায় শরীর যখন প্রসারিত হতে শুরু করে এই তন্তু সহজেই ভেঙে যায় এবং স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ তৈরি হয় তবে এই কারণটি নিয়ে বিশেষজ্ঞদের মধ্যে এখনো মতানৈক্য আছেএ ছাড়া যাদের পরিবারে গর্ভবতী নারীদের মধ্যে স্ট্রেচ মার্ক কমন অথবা যাদের গর্ভে যমজ বাচ্চা আছে কিংবা যাদের গর্ভকালে পলিহাইড্রামনিওস এর সমস্যা দেখা দেয় তাদের গায়ে স্ট্রেচ মার্ক দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি পলিহাইড্রামনিওস হলে গর্ভের শিশুর চারদিকে অতিরিক্ত তরল বা অ্যামনিওটিক ফ্লুইড জমে যায় স্ট্রেচ মার্ক পুরোপুরি প্রতিরোধযোগ্য নয় তবে কিছু সহজ নিয়ম মেনে চলে গর্ভাবস্থায় চামড়ায় অতিরিক্ত স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগ পড়ার সম্ভাবনা কমানো যেতে পারে যেমন—এক্ষেত্রে সবচেয়ে ভালো উপায় হলো ত্বকের নমনীয়তা বজায় রাখা নমনীয়তা বজায় রাখতে ও ত্বককে মজবুত করতে কোলাজেন তন্তুর উপস্থিতি নিশ্চিত করতে হবে এর জন্য কোলাজেন সমৃদ্ধ খাবার বেশি করে খেতে হবে যেমন মাংস মাছ সবুজ শাকসবজি আমড়া পেয়ারা কমলা ভিটামিন সি সমৃদ্ধ ফলমূল আমাদের শরীরে কোলাজেন তৈরিতে ভূমিকা রাখে[ ত্বক শুষ্ক থাকলে ফাটার প্রবণতা বেশি থাকে তাই ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে নিয়মিত ময়েশ্চারাইজার বা লোশন ব্যবহারের বিকল্প নেই ক্রিমের পরিবর্তে অলিভ ওয়েলও ব্যবহার করা যাবে সাধারণত শরীরের যেসকল অংশে চামড়া প্রসারিত হওয়ার কারণে ফাটা দাগ দেখা দেয় সেসব জায়গায় নিয়মিত লোশন বা তেল মালিশ করতে পারেনপর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করার অভ্যাস করতে হবে পর্যাপ্ত পানি পান করলে ত্বক সতেজ থাকে একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে[২] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেননিয়মিত ব্যায়াম করলে শরীরের রক্ত সরবরাহ ব্যবস্থা ভালো হয় যা ত্বকের সুস্থতা নিশ্চিত করে তাই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুনস্ট্রেচ মার্ক প্রতিরোধের আরেকটি উপায় হচ্ছে ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখা তবে এক্ষেত্রে কোনোভাবেই কম খেয়ে ওজন কম রাখার চেষ্টা করা যাবে না বরং স্বাস্থ্যকর ডায়েট অনুসরণ করতে হবে প্রয়োজনে একজন চিকিৎসক অথবা পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিন এই সমস্যার নির্দিষ্ট কোনো চিকিৎসা নেই চুলকানি ও অস্বস্তি দূর করার জন্য ত্বকে ভালো মানের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করে ত্বক আর্দ্র রাখতে পারেন বাজারে অনেক ক্রিম ও লোশন পাওয়া যায় যেগুলো স্ট্রেচ মার্ক ভালো করার দাবি করে থাকে তবে ক্লিনিক্যালি এর কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নিলেজার থেরাপির মাধ্যমে দাগ হালকা করা গেলেও সাধারণত পুরোপুরি স্বাভাবিক হয় নাসাধারণত বাচ্চা হওয়ার পর নিজে থেকেই দাগ গুলো অনেকটা হালকা হয়ে আসে তবে হয়তো কখনোই পুরোপুরি চলে যায় নাযদি বাচ্চা হয়ে যাওয়ার পরেও স্ট্রেচ মার্ক হালকা না হয় তাহলে একজন চর্ম বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন গর্ভাবস্থায় অনেকেরই যোনি বা মাসিকের রাস্তায় চুলকানি হয় গর্ভকালীন নানান শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে শরীরের অন্যান্য অংশের পাশাপাশি যোনিপথে এমন চুলকানি হতে পারে তবে কখনো কখনো এই চুলকানি যোনিপথে ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় অনেকেরই যোনি বা মাসিকের রাস্তায় চুলকানি হয় গর্ভকালীন নানান শারীরিক ও হরমোনগত পরিবর্তনের কারণে শরীরের অন্যান্য অংশের পাশাপাশি যোনিপথে এমন চুলকানি হতে পারে তবে কখনো কখনো এই চুলকানি যোনিপথে ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারেএই আর্টিকেলে গর্ভাবস্থায় যোনিপথে চুলকানির বিভিন্ন কারণ ইনফেকশন চেনার উপায় ও ঘরোয়া চিকিৎসা তুলে ধরা হয়েছে গর্ভাবস্থায় চুলকানির সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—হরমোনগত পরিবর্তন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরের হরমোনগুলো ওঠানামা করে এতে যোনিপথের স্বাভাবিক পরিবেশে পরিবর্তন আসে এসব পরিবর্তন যোনিপথকে স্পর্শকাতর করে তোলে কারও কারও ক্ষেত্রে যোনিপথ শুষ্ক হয়ে ওঠে এসব কারণে যোনিতে চুলকানি হতে পারে ঘাম গর্ভাবস্থার প্রভাবে যোনিপথে ঘাম হতে পারে এই ঘাম যোনিপথ ও এর আশেপাশের ত্বকে জ্বালাপোড়া সৃষ্টি করতে পারে তা থেকে এরকম চুলকানি হতে পারে বিশেষ করে বাতাস চলাচল করতে পারে না এমন অন্তর্বাস পরলে ঘাম হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় এই স্যাঁতস্যাঁতে পরিবেশে ঘাম থেকে যোনিতে চুলকানি—এমনকি ইনফেকশন হতে পারে[১] যৌনাঙ্গের চুল গর্ভাবস্থায় যৌনাঙ্গের চুল বড় হয়ে গেলে তার সাথে আশেপাশের ত্বকের ঘর্ষণ হতে পারে৷ বিশেষ করে আঁটসাঁট প্যান্ট বা অন্তর্বাস পরলে এমন ঘর্ষণের সম্ভাবনা বাড়ে এখান থেকে চুলকানি হতে পারে বিভিন্ন প্রসাধনীতে স্পর্শকাতরতা গর্ভাবস্থায় যৌনাঙ্গ ও যোনিপথ বেশি স্পর্শকাতর হয়ে পড়ে একারণে কিছু ডিটারজেন্ট সাবান ও বডি ওয়াশের সংস্পর্শে আসলে সেখানে চুলকানি হতে পারে ঔষধ কিছু ঔষধ সেবনের ফলে আপনার যৌনাঙ্গ শুষ্ক হয়ে যেতে পারে[২] এর মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিহিস্টামিন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট জাতীয় কিছু ঔষধ যৌনাঙ্গ শুষ্ক হয়ে গেলে সেখানে চুলকানি হতে পারে অতিরিক্ত সাদা স্রাব গর্ভাবস্থায় সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি সাদা স্রাব যাওয়া স্বাভাবিক এতে ভয় পাওয়ার কিছু নেই এই স্রাব যোনিপথকে ইনফেকশন থেকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে তবে কারও কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত স্রাবের সংস্পর্শে যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হতে পারে ফলে সেখানে চুলকানি হতে পারেসমাধানএখানে কিছু সহজ ও কার্যকর ঘরোয়া উপদেশ তুলে ধরা হয়েছে এসব উপদেশ গর্ভকালীন যোনিপথের সাধারণ চুলকানি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করতে পারেঠাণ্ডা সেঁকভেজা কাপড় ও বরফ চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে এজন্য বরফ এক টুকরা মোটা সুতি কাপড়ে মুড়িয়ে যৌনাঙ্গের যে স্থানে চুলকাচ্ছে সেখানে সেঁক দিতে পারেন এভাবে ৫–১০ মিনিট আলতো করে চেপে ধরে রাখুন এতেও কাজ না হলে চুলকানি না কমা পর্যন্ত এভাবে আরও কিছুক্ষণ ধরে রাখতে পারেননরম সুতি কাপড়এসময়ে সুতির পাতলা অন্তর্বাস পরলে আরাম পেতে পারেন সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা অন্তর্বাস পরলে ভালো হয়[৩] খুব টাইট বা আঁটসাঁট অন্তর্বাস ও পায়জামা না পরাই ভালোচুলকানোর বিকল্প নিয়মচুলকানির তাড়না আসলে সেটি দমিয়ে রাখা কঠিন কিন্তু চুলকানি ওঠা স্থানে চুলকালে কয়েক মুহূর্ত আরাম লাগলেও তা চুলকানির তাড়নাকে বাড়িয়ে দেয় এরপর আবার চুলকাতে ইচ্ছে করে এভাবে অনেক ক্ষেত্রেই চুলকানি একটা চক্রের মতো চলতে থাকে[৪] তা ছাড়া চুলকানোর ফলে ত্বকে ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ক্ষত সৃষ্টি হয় এসবের ভেতর দিয়ে জীবাণু ঢুকে ত্বকে ইনফেকশন ঘটাতে পারেতাই চুলকানি উঠলেও যৌনাঙ্গ ও যোনিপথ না চুলকানোর সর্বোচ্চ চেষ্টা করুন চুলকানোর পরিবর্তে আঙুলের ত্বক দিয়ে চুলকানি ওঠা স্থানটি আলতো করে চেপে চেপে নিতে পারেন আঘাত ও ইনফেকশন এড়াতে নখ ছোটো করে কেটে নিন এবং সবসময় মসৃণ ও পরিষ্কার রাখুনমেনথলযুক্ত ক্রিমলোশনযৌনাঙ্গের বাইরের অংশে মেনথল অথবা ক্যালামাইনযুক্ত ক্রিম ব্যবহার করতে পারেন এগুলো গর্ভাবস্থায় ব্যবহার করা নিরাপদ এবং চুলকানি থেকে কিছুটা আরাম দিতে পারেবেকিং সোডাবেকিং সোডা যৌনাঙ্গের জ্বালাপোড়া ও চুলকানি কমাতে সাহায্য করতে পারে এজন্য একটা বড় গামলায় কুসুম গরম পানি নিয়ে তাতে ১–২ টেবিল চামচ বেকিং সোডা মিশিয়ে নিন এবার গামলায় এমনভাবে বসুন যেন আপনার পা দুটো ফাঁকা হয়ে থাকে এবং সোডা মেশানো পানি যৌনাঙ্গের সংস্পর্শে যায় এভাবে ১০ মিনিট ধরে বসে থাকুন দিনে দুইবার করে পর পর কয়েকদিন এভাবে বসতে পারেনযৌনাঙ্গ ও যোনিপথের পরিচ্ছন্নতাযোনিপথের ভেতরের অংশ পরিষ্কার রাখার জন্য শরীরের নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে এক্ষেত্রে বাইরে থেকে আলাদা কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয় না বরং সুগন্ধি সাবান কিংবা অন্য কিছু দিয়ে পরিষ্কার করতে গেলে হিতে বিপরীত হয়ে ইনফেকশন হতে পারে তাই নিজে নিজে আলাদা করে যোনিপথের ভেতরে পরিষ্কারের চেষ্টা করবেন নাযোনিপথ সুস্থ ও জীবাণুমুক্ত রাখতে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন—ভেজা ও স্যাঁতস্যাঁতে জায়গায় ছত্রাক সহজে বংশবৃদ্ধি করে তাই যৌনাঙ্গ সবসময় পরিষ্কার ও শুকনো রাখুন যোনিপথের বাইরের অংশটুকু পানি ও সাধারণ সাবান দিয়ে ধোয়ার পরে ভালোমতো শুকিয়ে নিন কাপড় ভিজে গেলে (যেমন সাঁতারের অথবা ব্যায়ামের পর) তা দ্রুত পাল্টে ফেলুন পায়খানা শেষে পরিষ্কারের সময়ে সামনে থেকে পেছনের দিকে মুছে নিন অর্থাৎ যোনির দিক থেকে পায়ুর দিকে পরিষ্কার করুন৷ এটি পায়ুপথ থেকে যোনিতে ব্যাকটেরিয়া ছড়ানোর সম্ভাবনা কমাতে সাহায্য করবে যোনিপথে সুগন্ধি সাবান শাওয়ার জেল বিশেষ ওয়াশ কিংবা ডুশ ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন[৫] সুগন্ধি ওয়েট টিস্যু অথবা পারফিউমও ব্যবহার করবেন না ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক ও অ্যান্টিফাঙ্গাল ব্যবহার করবেন না শিডিউল অনুযায়ী নিয়মিত ভায়া (VIA) পরীক্ষা করুনসহনীয় তাপমাত্রার পানিবেশি গরম পানি ত্বককে শুষ্ক করে ফেলে যা থেকে চুলকানি হতে পারে এজন্য যৌনাঙ্গে গরম পানির ব্যবহার এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন গোসল ও যৌনাঙ্গ পরিষ্কারের সময়ে কুসুম গরম অথবা স্বাভাবিক তাপমাত্রার কিংবা একটু ঠাণ্ডা পানি বেছে নিনময়েশ্চারাইজারশুষ্ক ত্বকের চুলকানি অনেকটা বাড়িয়ে দিতে পারে[৬] শরীরে পর্যাপ্ত আর্দ্রতা ধরে রাখার মাধ্যমে শুষ্কতা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব আর্দ্রতা ধরে রাখার জন্য আপনি যৌনাঙ্গের বাইরের অংশে ভালো ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন এক্ষেত্রে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম অথবা অয়েন্টমেন্ট ব্যবহার করতে পারলে বেশি ভালো হয়[৭]হাতের কাছে ময়েশ্চারাইজিং ক্রিম না পেলে ময়েশ্চারাইজিং লোশন ব্যবহার করতে পারেন সুগন্ধিবিহীন ময়েশ্চারাইজারগুলো বেছে নেওয়ার চেষ্টা করুন কারণ অনেকসময় সুগন্ধী প্রসাধনসামগ্রী চুলকানি রিঅ্যাকশন ঘটিয়ে চুলকানি বাড়িয়ে দিতে পারেসাধারণ ময়েশ্চারাইজার কেবল যৌনাঙ্গের বাইরের অংশে ব্যবহার করবেন যোনিপথে বা যৌনাঙ্গের ভেতরের অংশে ব্যবহারের জন্য যেসব বিশেষ ময়েশ্চারাইজার বানানো হয় তা আমাদের দেশে সবসময় সহজে পাওয়া যায় না এমন ক্ষেত্রে কোন ধরনের ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করতে পারেন তা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিনকনডম ও লুব্রিকেন্টকনডম যৌনবাহিত রোগ ছড়িয়ে পড়া প্রতিরোধে সাহায্য করে তাই সাধারণ অবস্থার মতো গর্ভাবস্থাতেও যৌনমিলনের সময়ে কনডম ব্যবহার করুনএ ছাড়া যোনি শুষ্ক হয়ে থাকলে চুলকানি হতে পারে সেক্ষেত্রে যৌনমিলনের সময়ে লুব্রিকেন্ট বা পিচ্ছিলকারক ব্যবহার করতে পারেনমানসিক চাপ মোকাবেলামানসিক চাপ যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন মানসিক চাপ চুলকানি বাড়িয়ে দিতে পারেঅ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারে সতর্কতাঅযাচিতভাবে অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করলে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হতে পারে কাজেই চিকিৎসকের পরামর্শ ব্যতীত অ্যান্টিবায়োটিক সেবন করা থেকে বিরত থাকুন চিকিৎসক আপনাকে অ্যান্টিবায়োটিক দিলে সঠিক ডোজে পর্যাপ্ত সময় সেবন করে ডোজ সম্পন্ন করুনঘরোয়া চিকিৎসা শুরু করার পরও চুলকানি না কমলে অস্বস্তি হলে অথবা যৌনাঙ্গে ইনফেকশনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাওয়া উচিত ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা করবেন এবং ইনফেকশন থাকলে সেই অনুযায়ী যথাযথ চিকিৎসা দিবেনসময়মতো ইনফেকশনের চিকিৎসা না করলে তা মা ও গর্ভের শিশু উভয়ের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারে৷ ইনফেকশন নিয়ে আর্টিকেলের পরবর্তী অংশে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে সাধারণ কারণগুলো ছাড়াও বিভিন্ন ইনফেকশন অথবা জটিলতা থেকে আপনার যোনিপথে চুলকানি হতে পারে এসব ক্ষেত্রে অধিকাংশ সময়ই যোনিপথের স্রাবে অস্বাভাবিকতা দেখা যায় যেমন—ধূসর স্রাব—ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিসকোনো কারণে যোনিপথে থাকা জীবাণুগুলোর ভারসাম্যে পরিবর্তন হলে যোনিপথের স্বাভাবিক পরিবেশ নষ্ট হয়ে যায় তখন এই সমস্যা দেখা দিতে পারে একে ডাক্তারি ভাষায় ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস বলে এটি কোনো যৌনবাহিত রোগ নয় তবে যৌন সহবাস করলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারেগর্ভাবস্থায় যোনিপথের পরিবেশে পরিবর্তন হয় বলে এই রোগ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়তে পারে এক্ষেত্রে যোনিপথে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে—পাতলা ও ধূসর রঙের স্রাব যাওয়া স্রাব থেকে অনেকটা পচা মাছের মতো দুর্গন্ধ হওয়া বিশেষ করে সহবাসের পরে এমন দুর্গন্ধ হয়[৮] কিছু ক্ষেত্রে ব্যথা চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হওয়া[৯] তবে এই রোগে সাধারণত এমন হয় নাছবি ধূসর স্রাবঝুঁকিগর্ভাবস্থায় ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজাইনোসিস হলে চিকিৎসা করানো জরুরি কেননা গর্ভাবস্থায় এই রোগ হলে অকাল প্রসব এবং কম ওজনের সন্তান প্রসবের ঝুঁকি থাকে[১০] তাই সময়মতো সঠিক চিকিৎসা করানো খুব গুরুত্বপূর্ণতা ছাড়া এই রোগ এইচআইভি ও অন্যান্য যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বাড়িয়ে দেয় এসব থেকে আপনার পেলভিক ইনফ্ল্যামেটরি ডিজিজ হবার সম্ভাবনা থাকে যা আপনার পরবর্তী গর্ভধারণকে কঠিন করে তুলতে পারে[১১]করণীয় এই রোগের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন ডাক্তার আপনাকে গর্ভাবস্থার জন্য উপযুক্ত অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরামর্শ দিতে পারেন এক্ষেত্রে মুখে খাওয়ার ট্যাবলেট কিংবা মাসিকের রাস্তায় দেওয়ার ক্রিম অথবা জেল ব্যবহারের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে[১২] সেই সাথে—যোনিপথের পরিচ্ছন্নতার উপদেশগুলো মেনে চলুন সহবাসের সময়ে সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার করুন একাধিক যৌন সঙ্গীর সাথে সহবাস এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন[১৩]সাদা রঙের চাকা চাকা স্রাব—ফাঙ্গাল ইনফেকশনগর্ভাবস্থায় হরমোনের পরিবর্তনসহ কিছু কারণে ফাঙ্গাল ইনফেকশনের সম্ভাবনা বেড়ে যায়[১৪] এটি অনেকের কাছে ঈস্ট ইনফেকশন নামেও পরিচিত[১৫] এক্ষেত্রে অস্বাভাবিক ধরনের সাদা স্রাব হতে পারে এসময়ে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যেতে পারে—অতিরিক্ত পরিমাণে দই অথবা পনিরের মতো সাদা ও চাকা চাকা স্রাব যাওয়া[১৬] স্রাবে সাধারণত গন্ধ থাকে না যোনিপথের আশেপাশে প্রচুর চুলকানি বা জ্বালাপোড়া হওয়া প্রস্রাব ও সহবাসের সময়ে ব্যথা কিংবা অস্বস্তি হওয়াছবি সাদা রঙের চাকা চাকা স্রাবছবি সাদা রঙের চাকা চাকা স্রাবঝুঁকিযোনিপথে কোনো কারণে উপকারী জীবাণুর সংখ্যা কমে গিয়ে এক ধরনের ফাঙ্গাসের সংখ্যা বেড়ে গেলে এই রোগ দেখা দিতে পারে[১৭]গর্ভাবস্থায় যোনিপথের পরিবেশে পরিবর্তন আসার ফলে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় অন্যান্য যেসব বিষয় এর ঝুঁকি বাড়াতে পারে—ডায়াবেটিস থাকলে গর্ভধারণের আগে হরমোনযুক্ত জন্ম নিয়ন্ত্রণ পিল বা বড়ি সেবন করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে গেলে কোনো অসুস্থতার জন্য সম্প্রতি অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করে থাকলে অ্যান্টিবায়োটিক মাসিকের রাস্তার ভালো জীবাণুকে মেরে ফেলতে পারে সেই সুযোগে ফাঙ্গাস অনেক বংশবিস্তার করলে এই রোগ দেখা দিতে পারেগুরুতর ক্ষেত্রে ফাঙ্গাল ইনফেকশন থেকে আপনার যোনিপথ ফুলে যেতে পারে এবং সেখানে ক্ষত হতে পারে ক্ষত থেকে অন্য ইনফেকশনের ঝুঁকিও বাড়তে পারেকরণীয়গর্ভাবস্থায় ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে ভয়ের কিছু নেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসা নিলে এটি সহজেই সেরে যায় এক্ষেত্রে ডাক্তার মাসিকের রাস্তায় ঢোকানোর ঔষধ বা ক্রিম দিতে পারেন সাধারণত চিকিৎসা শুরু করার ১–২ সপ্তাহের মধ্যেই এই ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন সেরে যায়উল্লেখ্য সব ধরনের অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয় যেমন গর্ভাবস্থায় মুখে খাওয়ার কিছু অ্যান্টিফাঙ্গাল (যেমন ফ্লুকোনাজোল) সেবনের ফলে গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটির আশঙ্কা থাকে তাই নিজে নিজে ঔষধ কিনে চিকিৎসা শুরু করবেন না ডাক্তারকে অবশ্যই আপনার গর্ভাবস্থা সম্পর্কে অবগত করবেনঅ্যান্টিফাঙ্গাল চিকিৎসার পাশাপাশি পুনরায় ইনফেকশন হওয়া প্রতিরোধে যোনিপথের পরিচ্ছন্নতার উপদেশগুলো মেনে চলুনযৌনবাহিত ইনফেকশনকিছু যৌনবাহিত ইনফেকশন হলে যোনিপথে চুলকানি হতে পারে যেমন গনোরিয়া ক্ল্যামিডিয়া ও ট্রিকোমোনায়াসিস এসব রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে কনডম জাতীয় সুরক্ষা ছাড়া সহবাস করলে আপনার মধ্যেও এগুলো ছড়িয়ে পড়তে পারে কিছু যৌনবাহিত রোগ মা ও গর্ভের শিশুর বিভিন্ন মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে তাই এমন ইনফেকশনের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরিযৌনবাহিত রোগে যোনিপথে চুলকানির পাশাপাশি যেসব লক্ষণ থাকতে পারে—অস্বাভাবিক গন্ধ কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব সবুজ হলুদ লালচে অথবা ধূসর রঙের স্রাব যোনিপথের আশেপাশে ব্যথা অথবা চুলকানি প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হওয়া যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হওয়া বা লালচে হয়ে যাওয়াছবি সবুজ ও হলুদের মিশ্র রঙের স্রাব ছবি সবুজ রঙের স্রাবছবি হলুদ রঙের স্রাব ছবি লালচে রঙের স্রাবঝুঁকিযৌনবাহিত ইনফেকশন আপনার জরায়ুসহ প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন জায়গায় ইনফেকশন ঘটাতে পারে সেখান থেকে নানান দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা সৃষ্টি হতে পারেগর্ভাবস্থায় গনোরিয়া ও ক্ল্যামিডিয়ার মতো ইনফেকশন হলে গর্ভের শিশুর নানান মারাত্মক জটিলতার ঝুঁকি বাড়াতে পারে গর্ভের শিশুর অকাল প্রসব কম ওজন নিয়ে জন্মানো সময়ের আগে গর্ভবতীর পানি ভেঙে যাওয়া ও গর্ভপাতের মতো মারাত্মক জটিলতার সাথে এসব যৌনবাহিত ইনফেকশনের সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে[১৮][১৯]করণীয়যৌনবাহিত ইনফেকশনের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডাক্তার আপনাকে গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ এমন অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহারের পরামর্শ দিবেন৷এসব ইনফেকশন সহবাসের মাধ্যমে ছড়ায় তাই আপনার পাশাপাশি আপনার সঙ্গীরও চিকিৎসা করানো জরুরি সঙ্গীর ইনফেকশনের চিকিৎসা না করলে তার কাছ থেকে পুনরায় আপনার ইনফেকশন হতে পারে এ ছাড়া চিকিৎসার পরও বিশেষ করে কনডম ছাড়া সহবাস করলে পুনরায় এসব রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই কনডম ব্যবহারের মতো নিরাপদ শারীরিক সম্পর্কের নিয়ম মানা গুরুত্বপূর্ণ জ্বর আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার এক ধরনের প্রতিক্রিয়া সাধারণত কোনো রোগ বা ইনফেকশন হলে তার লক্ষণ হিসেবে আমাদের জ্বর আসে অন্যান্য সময়ের মতো গর্ভাবস্থাতেও জ্বর আসতে পারেজ্বর আমাদের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থার এক ধরনের প্রতিক্রিয়া সাধারণত কোনো রোগ বা ইনফেকশন হলে তার লক্ষণ হিসেবে আমাদের জ্বর আসে অন্যান্য সময়ের মতো গর্ভাবস্থাতেও জ্বর আসতে পারেগর্ভাবস্থায় জ্বর বা অতিরিক্ত তাপমাত্রা গর্ভের শিশুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে এসময়ে ঘাবড়ে না গিয়ে জ্বর কমানোর ব্যবস্থা করা এবং দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ গর্ভাবস্থায় জ্বর না আসলেও অনেকের গা গরম লাগতে পারে গর্ভকালীন হরমোনগুলোর প্রভাবে এবং রক্ত প্রবাহ বেড়ে যাওয়ার কারণে এমন হয় একারণে জ্বর এসেছে কি না সেটা বুঝে ওঠা কঠিন হতে পারে তাই জ্বর এসেছে মনে হলে অথবা শরীর খারাপ লাগলে থার্মোমিটার দিয়ে শরীরের তাপমাত্রা মেপে দেখুনজ্বর আসলে আপনার—গা গরম লাগতে পারেশরীরে কাঁপুনি হতে পারে হঠাৎ শীত শীত লাগতে পারেঠান্ডা লাগার কিছুক্ষণ পর আবার গরম লাগতে পাস্বাভাবিকের চেয়ে বেশি ঘাম হতে পাউজ্জ্বল বর্ণের হলে ত্বক লালচে দেখাতে পা শরীর দুর্বল লাগতে পারেএ ছাড়া শরীরের কোথাও কোনো ইনফেকশন হলে সেই অনুযায়ী বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে পারে জ্বর মাপার পদ্ধতিথার্মোমিটারে তাপমাত্রা ১০০৪° ফারেনহাইট বা ৩৮° সেলসিয়াস কিংবা তার বেশি দেখালে ধরে নেওয়া হয় জ্বর হয়েছে তবে জ্বরের ঔষধ (যেমন প্যারাসিটামল) খাওয়ার পরে তাপমাত্রা মাপলে সঠিক ফলাফল আসার সম্ভাবনা কমে যায়জ্বর মাপার সবচেয়ে নির্ভরযোগ্য পদ্ধতি হলো থার্মোমিটারের সাহায্যে জ্বর মেপে দেখা হাতের কাছে থার্মোমিটার না থাকলে বুকে অথবা পিঠে হাত দিয়ে তাপমাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি কি না সেটা বোঝার চেষ্টা করুন তাপমাত্রা বেশি মনে হলে অথবা শরীরে কাঁপুনি ওঠার মতো লক্ষণ থাকলে সেটাকে জ্বর ধরে নিয়েই পরবর্তী পদক্ষেপ নিনআমরা সাধারণত কপালে হাত দিয়ে জ্বর এসেছে কি না সেটা বোঝার চেষ্টা করি কিন্তু জ্বর মাপার এই পদ্ধতিটি নির্ভরযোগ্য নয় গর্ভাবস্থায় জ্বর আসলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন যেহেতু শরীরে কোনো রোগ বা ইনফেকশন বাসা বাঁধার কারণে জ্বর হতে পারে তাই মূল কারণ খুঁজে বের করে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা নেওয়া গুরুত্বপূর্ণজ্বর আসার কতক্ষণের মধ্যে ডাক্তার দেখাবেন যদি তাপমাত্রা ১০২° ফারেনহাইট/৩৮৯° সেলসিয়াস বা এর বেশি হয় তাহলে দেরি না করে ডাক্তার দেখান যদি তাপমাত্রা ১০২° ফারেনহাইট/৩৮৯° সেলসিয়াস এর কম হয় এবং ১ দিনের বেশি সময় ধরে জ্বর থাকে তাহলে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডাক্তারের পরামর্শ নিন অনেক সময় জ্বর নিজে নিজেই চলে যেতে পারে তারপরেও ডাক্তারের কাছে গিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া উচিত শরীরে কোনো ইনফেকশন থাকলে ডাক্তার প্রয়োজন অনুযায়ী অ্যান্টিবায়োটিক অথবা অ্যান্টিভাইরাল ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনজ্বর উপশমে ঘরোয়া চিকিৎসাঘরোয়া কিছু পরামর্শ আপনাকে জ্বর উপশমে সাহায্য করতে পারে জ্বর পুরোপুরি সারাতে এসবের পাশাপাশি যে রোগের কারণে জ্বর এসেছে সেটিরও সঠিক চিকিৎসা নিতে হবেজ্বর কমাতে নিচের পরামর্শগুলো মেনে চলুন—পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিনসম্ভব হলে অফিস থেকে ছুটি নিয়ে বাড়িতে বিশ্রাম নিন প্রচুর পানি ও তরল খাবার খান এটি পানিশূন্যতা প্রতিরোধে সাহায্য করবে এমন পরিমাণে পানি পান করবেন যেন প্রস্রাব স্বচ্ছ ও হালকা হলুদ হয় পাতলা ও ঢিলেঢালা কাপড় পড়ুন এতে করে আপনার শরীরে বাতাস চলাচল করবে যদি ঠান্ডা লাগে বা কাঁপুনি আসে তাহলে পাতলা চাদর গায়ে জড়াতে পারেন রোদ ও গরম আবহাওয়া থেকে যথাসম্ভব দূরে একটা ঠান্ডা ও আরামদায়ক ঘরে থাকুন জানালা খুলে দিয়ে পর্যাপ্ত বাতাস চলাচলের ব্যবস্থা করুন ফ্যান হালকা করে ছেড়ে দিন যদি সম্ভব হয় হালকা গরম পানিতে গোসল করতে পারেন তবে বেশি ঠান্ডা পানি দিয়ে গোসল না করাই ভালো এতে কাঁপুনি হয়ে জ্বর আরও বেড়ে যেতে পারে এক টুকরা পরিষ্কার কাপড় পানিতে ভেজানোর পর সেটা চিপে কপালে দিতে পারেন একে অনেকে জলপট্টি বলেন চাইলে পুরো শরীর বিশেষ করে ঘাড় বুক ও বগল জলপট্টি দিয়ে মুছে নিতে পারেন জ্বরের সময়ে এভাবে গা মুছিয়ে দিলে অনেকে আরাম পান নিজে জলপট্টি দিতে কষ্ট হলে পরিবারের অন্য কারও সাহায্য নিতে পারেনসাধারণ অবস্থায় একজন গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ অথবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে কমপক্ষে ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে যদি ডাক্তার বিশেষ কোনো পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেনঔষধগর্ভাবস্থায় জ্বরের জন্য উপযুক্ত ঔষধ হলো প্যারাসিটামল এটি জ্বর ও জ্বরের কারণে হওয়া অস্বস্তি কমাতে সাহায্য করেপ্যারাসিটামল একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ চেষ্টা করবেন আপনার জন্য ন্যূনতম যেই ডোজে কাজ হয় সেই ডোজটি বেছে নিতে এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে কিংবা আগে থেকে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিতে পারেনউল্লেখ্য প্যারাসিটামল কেনার সময়ে সাথে ক্যাফেইন কোডেইন অথবা অন্য কোনো উপাদান যোগ করা আছে কি না সেটা দেখে নিন অনেকসময় এই ধরনের ঔষধের ক্ষেত্রে নামের আগেপরে এক্সট্রা শব্দটা যোগ করা থাকে গর্ভাবস্থায় এই জাতীয় ঔষধের পরিবর্তে সাধারণ প্যারাসিটামল বেছে নেওয়া উচিতগর্ভাবস্থায় জ্বর কমাতে যে ধরনের ঔষধ সেবন করা যাবে না কিছু ঔষধ সাধারণ সময়ে জ্বরের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হলেও গর্ভাবস্থায় সেগুলো এড়িয়ে চলবেন যেমন আইবুপ্রোফেন ও অ্যাসপিরিন এগুলো ব্যথার ঔষধ বা ননস্টেরয়ডাল প্রদাহনাশক হিসেবে পরিচিত গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে— গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে এ ধরনের ঔষধ সেবনের ফলে গর্ভের শিশুর জন্মগত ত্রুটি হতে পারে এমনকি গর্ভপাত হয়ে যেতে পারে[৩] গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহ বা তারপরে এই ঔষধ সেবন করলে আপনার অনাগত শিশুর কিডনিতে সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে[৪] এ ছাড়া গর্ভের শিশুর হার্টের সমস্যা হতে পারে এমনকি দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে মায়ের আইবুপ্রোফেন সেবন করার সাথে শিশুর জন্মের পরে (১৮ মাস বয়সে) হাঁপানি বা অ্যাজমা হওয়ার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে তাই ডাক্তারের সুনির্দিষ্ট পরামর্শ ছাড়া গর্ভাবস্থায় এই জাতীয় ঔষধ সেবন করবেন না সাধারণ কারণসাধারণ সময়ে যেসব কারণে জ্বর আসে গর্ভাবস্থাতেও সেই কারণগুলোতে আপনার জ্বর আসতে পারে এর মধ্যে অন্যতম হলো বিভিন্ন ধরনের ইনফেকশন যেমন—১ প্রস্রাবের ইনফেকশন গর্ভাবস্থায় জ্বর আসার অন্যতম কারণ হলো প্রস্রাবের ইনফেকশন প্রস্রাবের ইনফেকশন হলে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াসহ কিছু নির্দিষ্ট লক্ষণ দেখা দিতে পারেগর্ভাবস্থায় নারীদের প্রস্রাবের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় সঠিক চিকিৎসা না করলে এটি কিডনির ইনফেকশনসহ বিভিন্ন গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে হতে পারে ফলে প্রসব সংক্রান্ত জটিলতা বাড়তে পারে ২ পেটের অসুখ ফুড পয়জনিং কিংবা এ জাতীয় পেটের অসুখ থেকেও আপনার গর্ভাবস্থায় জ্বর আসতে পারে এক্ষেত্রে সাধারণত জ্বরের পাশাপাশি বমি পাতলা পায়খানা ও পেট কামড়ানোর মতো লক্ষণ দেখা দেয়৩ সাধারণ সর্দিজ্বর এটি সাধারণত ভাইরাল ইনফেকশনের কারণে হয় এবং খুব একটা গুরুতর হয় না এতে হালকা জ্বরের সাথে সর্দি ও গলা ব্যথা থাকতে পারে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এটি নিজ থেকেই ভালো হয়ে যায়৪ ফ্লু ফ্লু বা ইনফ্লুয়েঞ্জা হলে হঠাৎ করেই তীব্র জ্বর আসতে পারে এর পাশাপাশি গায়ে কাঁপুনি ও কাশির মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে কখনো কখনো গায়ে ব্যথাও থাকতে পারে গর্ভবতী মা ও তাদের শিশুদের ফ্লু জনিত জটিলতায় ভোগার ঝুঁকি বেশি তাই এসময়ে ফ্লু আক্রান্ত ব্যক্তিদের সংস্পর্শ থেকে যতটা সম্ভব দূরে থাকতে হবেপড়ুন ফ্লু না কি সাধারণ সর্দি হয়েছে তা বোঝার উপায়৫ কোভিড১৯ করোনা হলেও গর্ভাবস্থায় জ্বর আসতে পারে জ্বরের সাথে গলাব্যথা কাশি অস্বাভাবিক স্বাদগন্ধ পাওয়া কিংবা স্বাদ ও ঘ্রাণশক্তি হারিয়ে ফেলার মতো উপসর্গ দেখা দিলে তা কোভিডের লক্ষণ হতে পারে এমন ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন সম্ভব হলে করোনা পরীক্ষা করিয়ে ফেলুন ওপরের কারণগুলোর পাশাপাশি নিউমোনিয়া ডেঙ্গু ম্যালেরিয়া টাইফয়েড যক্ষ্মা ও হেপাটাইটিসের মতো ইনফেকশনের কারণে গর্ভাবস্থায় জ্বর আসতে পারেবিশেষ কারণ১ কোরিওঅ্যামনিওনাইটিস গর্ভাবস্থায় আপনার গর্ভের শিশুকে কিছু আবরণ বা পর্দা ঘিরে রাখে এমন দুটি পর্দা হলো কোরিওন ও অ্যামনিওন এই দুটি পর্দায় প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া হলে তাকে ডাক্তারি ভাষায় কোরিওঅ্যামনিওনাইটিস বলা হয়মূলত কোনো কারণে গর্ভথলি ছিঁড়ে গেলে যোনিপথে থাকা জীবাণু এই পর্দাগুলোতে ইনফেকশন ঘটায় তখন এই সমস্যা দেখা দেয় এসময় জ্বর আসে জ্বরের পাশাপাশি সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয়—পেটে ব্যথাতলপেটের নিচের দিকে চাপ দিলে ব্যথা পাওয়া যোনিপথে ঘন দুর্গন্ধযুক্ত তরল বেরিয়ে আসা হার্টবিট বেড়ে যাওয়া হার্টবিট বেড়ে গেলে আপনার বুক ধড়ফড় করতে পারে এ ছাড়া শরীরে কাঁপুনি ও ঘাম হতে পারে২ গর্ভপাতজনিত ইনফেকশন জরায়ুতে জীবাণু সংক্রমণের কারণে গর্ভপাত হলে কিংবা গর্ভপাত করাতে গিয়ে জরায়ুতে জীবাণু সংক্রমিত হলে তাকে ডাক্তারি ভাষায় সেপটিক অ্যাবরশন বলে সাধারণত প্রথম ত্রৈমাসিকে এই সমস্যা হয়ে থাকে এক্ষেত্রে সাধারণত গায়ে কাঁপুনি দিয়ে তীব্র জ্বর আসতে পারে জ্বরের পাশাপাশি সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়—তীব্র পেট ব্যথা তলপেটে চাপ দিলে ব্যথা যোনিপথে ঘন দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব অথবা রক্ত যাওয়া৩ লিস্টেরিয়া ইনফেকশন দূষিত খাবার ও পানি থেকে গর্ভাবস্থায় লিস্টেরিয়া নামক ইনফেকশন হতে পারে এই রোগটি বিরল হলেও সাধারণ মানুষের তুলনায় গর্ভবতীদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ১০ গুণ বেশি এটি পানিশূন্যতা গর্ভপাত মৃত শিশু প্রসব ও অকাল প্রসবের মতো মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এই রোগে জ্বরের পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলো থাকতে পারে—গায়ে কাঁপুনি দেওয়ামাংসপেশির ব্যথা বমি বমি ভ ডায়রিয়া ঘাড় ব্যথা মাথা ব্যথা ভারসাম্য হারিয়ে ফেলা বিভ্রান্ গর্ভাবস্থায় মূলত বিভিন্ন ইনফেকশন প্রতিরোধ করতে পারলে আপনি জ্বর আসার ঝুঁকি কমাতে পারবেন গর্ভকালীন সময়ে ইনফেকশন বা সংক্রমণ প্রতিরোধের জন্য নিচের নিয়মগুলো মেনে চলুন—১ পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা মেনে চলুন গর্ভাবস্থায় পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা মেনে চলা বিশেষভাবে জরুরি এসময়ে বার বার সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে ভালো করে হাত ধুয়ে নিবেনযেসব ক্ষেত্রে হাত ধুতেই হবে খাবার তৈরি এবং খাওয়ার আগে ও পরে টয়লেট ব্যবহারের পরে বিভিন্ন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে তা মা ও গর্ভের শিশু উভয়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারে—কিছু গবেষণা থেকে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে তা গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে অবশ্য সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় গর্ভাবস্থার ১৬তম সপ্তাহ পর্যন্ত জ্বর হওয়ার সাথে গর্ভপাতের সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি এই বিষয়ে আরও গবেষণা প্রয়োজন গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে জ্বর আসার সাথে গর্ভের শিশুর কিছু জন্মগত ত্রুটির সম্পর্ক কিছুটা বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে এসব ত্রুটির মধ্যে রয়েছে হার্টের রোগ ব্রেইন ও স্নায়ুতন্ত্রের সমস্যা ঠোঁট কাটা মুখের তালু কাটা ও নাড়িভুঁড়ির সমস্যাগর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে জ্বর হলে এটি জন্মের পরে শিশুকে অমনোযোগিতার ঝুঁকিতে ফেলতে পারেগর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বা ১২তম সপ্তাহের পর জ্বর আসলে গর্ভের শিশুর অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে গর্ভাবস্থার এই সময়ের পর তিনবার বা তার বেশি জ্বর আসলে এই ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যেতে পারেসব গবেষণায় গর্ভাবস্থায় জ্বরের সাথে এসব জটিলতার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নি এ বিষয়ে আরও গবেষণার অবকাশ রয়েছে যেকোনো ক্ষেত্রেই জ্বর আসলে তা কমানোর ব্যবস্থা করা ও সময়মতো ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি গর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে যা নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় নাক থেকে রক্ত পড়লে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে যান তবে গর্ভাবস্থায় এমনটা হওয়া খুব কমন এবং সাধারণত দুশ্চিন্তার কারণ নয় ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব এই আর্টিকেলে গর্ভকালীন সময়ে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ ও সমাধানগুলো সহজ ভাষায় তুলে ধরা হয়েছেগর্ভাবস্থায় মায়েদের শরীরে কিছু পরিবর্তন আসে যা নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় নাক থেকে রক্ত পড়লে অনেকে আতঙ্কিত হয়ে যান তবে গর্ভাবস্থায় এমনটা হওয়া খুব কমন এবং সাধারণত দুশ্চিন্তার কারণ নয় ঘরোয়া কিছু উপায় অবলম্বন করে এই সমস্যার সমাধান করা সম্ভব এই আর্টিকেলে গর্ভকালীন সময়ে নাক দিয়ে রক্ত পড়ার কারণ ও সমাধানগুলো সহজ ভাষায় তুলে ধরা হয়েছে গর্ভাবস্থায় নাক থেকে রক্ত পড়ার কোনো নির্দিষ্ট সময়কাল নেই এই সমস্যা গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে শুরু হয়ে পুরো গর্ভকাল জুড়ে চলতে পারে গর্ভাবস্থায় কতদিন ধরে এই সমস্যা থাকবে সেটা গর্ভবতীর শারীরিক অবস্থা ও তার জীবনধারার মতো কিছু বিষয়ের সাথে জড়িত তাই একেকজনের ক্ষেত্রে এই সময়কাল একেকরকম হতে পারে গর্ভধারণের পর আপনার শরীরে স্বাভাবিকভাবেই বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয় এমন কিছু পরিবর্তনের কারণে গর্ভবতীদের নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে গর্ভাবস্থায় নাক থেকে রক্ত পড়ার কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—১ শরীরে রক্তের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া গর্ভাবস্থায় মায়ের শরীরে রক্তের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ বেড়ে যায় বাড়তি রক্ত প্রবাহের কারণে নাকের ভেতরের আবরণ কিছুটা ফুলে যায় এ ছাড়া এই আবরণে চিকন চিকন পাতলা রক্তনালী থাকে যার সংখ্যাও বেড়ে যায় রক্ত বেড়ে যাওয়াতে এগুলোও দুর্বল হয়ে যায় সব মিলিয়ে ভেতরের আবরণ শুকিয়ে এবং রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়২ হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়া গর্ভাবস্থায় কিছু হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে আপনার শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মতো নাকেও পরিবর্তন আসে এসময়ে নাকের ভেতরের আবরণ পুরু হয়ে ওঠে এবং শুকিয়ে যায় ফলে আবরণ থেকে সহজেই রক্তক্ষরণ হতে পারে৩ পানিশূন্যতা গর্ভাবস্থায় শরীরের পানির চাহিদা বেড়ে যায় পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি না খাওয়া হলে সহজেই পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন তৈরি হতে পারে এমন অবস্থায় আপনার নাকের ভেতরের আবরণ শুষ্ক হয়ে ফেটে যেতে পারে এই কারণেও নাক থেকে রক্ত পড়তে পারে৪ এলার্জি অথবা ঠাণ্ডাসর্দি এলার্জি অথবা সর্দি হলে নাকের ভেতরের আবরণে প্রদাহ হয় ফলে সেখান থেকে সহজেই রক্তক্ষরণ হতে পারেউল্লেখ্য গর্ভাবস্থায় নাক দিয়ে রক্ত পড়ার পাশাপাশি নাক বন্ধ থাকার সমস্যাও বেশ কমন সহজ কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে আপনি নাক থেকে রক্ত পড়া দ্রুত বন্ধ করতে পারেন নাক থেকে রক্ত পড়লে করণীয়—শুয়ে না থেকে উঠে সোজা হয়ে বসুন অথবা দাঁড়ান এতে করে নাকের রক্তনালীতে রক্তের চাপ কিছুটা কমে আসে যা রক্তপাত কমাতে সাহায্য করেবসা অবস্থায় নাকের নরম অংশ অর্থাৎ নাকের হাড়ের ঠিক নিচে ও নাকের ছিদ্রের ঠিক উপরের অংশটি ভালোমতো চেপে ধরুন নাকে ব্যথা না দিয়ে সর্বোচ্চ যতটুকু চাপ দেওয়া সম্ভব ততটুকুই চাপ দিবেন এভাবে একটানা চাপ দিয়ে ১০–১৫ মিনিট ধরে থাকুনছবি নাক চেপে ধরামাথা কিছুটা সামনে ঝুঁকান এবং মুখ দিয়ে শ্বাস নিন এতে করে রক্ত গলার ভেতর দিয়ে না নেমে নাক দিয়ে বের হয়ে যাবে এভাবে রক্ত গিলে ফেলার সম্ভাবনা কমানো যাবে একটা রুমালে ফ্রোজেন মটরশুঁটি কোনো সবজির প্যাকেট কিংবা আইস প্যাক পেঁচিয়ে নাকের ওপর ধরে রাখতে পারেন এটি নাকের রক্ত প্রবাহ কমিয়ে রক্ত পড়া থামাতে সাহায্য করতে পারে যদি এসব উপায়ে রক্ত পড়া বন্ধ না হয় তাহলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিননাক থেকে রক্ত পড়া থেমে যাওয়ার পর কমপক্ষে ২৪ ঘণ্টা নাক ঝাড়া নিচে ঝুঁকে কিছু করা ভারী কাজ করা ও গরম পানীয় পান করা থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করবেন নাক থেকে রক্ত পড়া প্রতিরোধে আপনি নিচের ঘরোয়া উপায়গুলো অবলম্বন করতে পারেন—১ নাকের ভেতরের আবরণকে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করুন নাকের ভেতরের আবরণ শুষ্ক হয়ে গেলে সেখানে রক্তনালী ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় তাই নাকের ভেতরটাকে ভেজা ভেজা রাখতে পারলে নাক থেকে রক্ত পড়ার প্রবণতা কমে আসতে পারে নাককে শুষ্কতা থেকে রক্ষা করার জন্য—নাকের ভেতর হালকা করে স্যালাইন ড্রপ বা স্প্রে ও ভ্যাসলিন ব্যবহার করুন তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অন্য কোনো নাকের ড্রপ বা ঔষধ ব্যবহার করবেন না একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন২ নাকের আবরণকে আঘাত থেকে রক্ষা করুন নাকের ভেতর হালকা আঘাত থেকে রক্তক্ষরণ শুরু হয়ে যেতে পারে তাই যত্নের সাথে ছোটোখাটো আঘাত থেকে নাককে রক্ষা করুন যেমন—নাক ঝাড়ার সময় খুব জোরে না ঝেড়ে আলতোভাবে ঝাড়ুন প্রয়োজন ছাড়া বার বার নাক ঝাড়ার অভ্যাস থাকলে তা পরিত্যাগ করুন নাক খুঁটানো থেকে বিরত থাকুন৩ নাকের ভেতর চাপ কমানোর জন্য মুখ খুলে হাঁচি দিন হাঁচি দেওয়ার সময় মুখ খোলা রাখলে নাকের ওপর কম চাপ পড়ে এটা রক্ত পড়ার প্রবণতা কমাতে সাহায্য করতে পারে৪ ঠাণ্ডাসর্দি অথবা অ্যালার্জির জন্য চিকিৎসা নিন সর্দি অথবা অ্যালার্জি থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করুন সঠিক চিকিৎসা নিলে নাক বন্ধ থাকা ও রক্ত পড়ার সম্ভাবনা কমে আসবে সাধারণত গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো নাক থেকে সামান্য রক্ত পড়া স্বাভাবিক এবং ঘরোয়াভাবেই এর সমাধান করা যায় তবে কোনো কোনো পরিস্থিতিতে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার প্রয়োজন পড়তে পারে যেমন—যদি ১০–১৫ মিনিটের বেশি সময় ধরে নাক দিয়ে রক্তপাত হয় যদি ঘন ঘন নাক থেকে রক্তপাত হয় যদি ভারী রক্তপাত হয়[৯] যদি এত বেশি রক্ত গিলে ফেলেন যে বমির উদ্রেক হয় যদি মাথায় আঘাত পাওয়ার পর থেকে নাক দিয়ে রক্ত পড়তে থাকে যদি মাথা ঘুরায় অথবা দুর্বল লাগে যদি বুকে ব্যথা অথবা শ্বাসকষ্ট হয় যদি উচ্চ রক্তচাপ থাকেএ ছাড়া নাক দিয়ে রক্ত পড়ার সাথে অন্য কোনো লক্ষণ (যেমন নাকে ব্যথা অথবা মাথা ব্যথা) থাকা স্বাভাবিক নয় সুতরাং নাক দিয়ে রক্ত পড়ার পাশাপাশি যদি আপনার এই লক্ষণগুলো থাকে তাহলেও দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিতগর্ভাবস্থার যেকোনো সময়ে আপনার নাক থেকে রক্ত পড়ার অভিজ্ঞতা হয়ে থাকলে পরবর্তী গর্ভকালীন চেকআপে বিষয়টি ডাক্তারকে জানাবেন সাধারণত গর্ভাবস্থায় নাক দিয়ে রক্ত পড়া তেমন শঙ্কার কারণ না হলেও কখনো কখনো তা কিছু গর্ভকালীন জটিলতার লক্ষণ হতে পারে ডাক্তারকে বিষয়টি জানিয়ে রাখলে তিনি আপনাকে পর্যবেক্ষণ করে উপযুক্ত পরামর্শ দিতে পারবেন গর্ভবতী অবস্থায় কোনো একদিন হঠাৎ করেই আপনার নাক থেকে রক্ত পড়া শুরু হতে পারে এবং এতে আপনি খানিকটা বিচলিত হয়ে পড়তে পারেন এটাই স্বাভাবিক নাক দিয়ে রক্ত পড়ার স্থান সময় ও পরিমাণে ব্যাপক ভিন্নতা থাকতে পারে যেমন— গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা ও পেট কামড়ানো বেশ পরিচিত সমস্যা এগুলো সাধারণত দুশ্চিন্তার কারণ নয় তবে কখনো কখনো পেট ব্যথা কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হয় এই আর্টিকেলে সাধারণ ও গুরুতর—উভয় ধরনের পেট ব্যথা ও করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছেগর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা ও পেট কামড়ানো বেশ পরিচিত সমস্যা এগুলো সাধারণত দুশ্চিন্তার কারণ নয় তবে কখনো কখনো পেট ব্যথা কোনো গুরুতর সমস্যার লক্ষণ হতে পারে সেসব ক্ষেত্রে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে হয় এই আর্টিকেলে সাধারণ ও গুরুতর—উভয় ধরনের পেট ব্যথা ও করণীয় সম্পর্কে তুলে ধরা হয়েছে পেটে ভোঁতা ধরনের ব্যথা হতে পারে আবার তীক্ষ্ণ ব্যথাও হতে পারে আপনার পেট ব্যথা যদি তেমন তীব্র না হয় এবং বিশ্রাম দেহভঙ্গির পরিবর্তন পায়খানা অথবা বায়ুত্যাগের সাথে কমে যায় তাহলে সেই ব্যথা নিয়ে সাধারণত ঘাবড়ে যাওয়ার কিছু নেইগর্ভধারণের ফলে আপনার শরীরে হরমোনজনিত নানান পরিবর্তন হয় তা ছাড়া গর্ভে বড় হতে থাকা শিশুকে জায়গা করে দিতে আপনার পেটের অংশেও বিভিন্ন পরিবর্তন আসে মূলত এসব কারণেই গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা হতে পারেপেট ব্যথার সাধারণ কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—ইমপ্ল্যান্টেশনমায়ের পেটে ভ্রূণ বড় হতে হতে পূর্ণাঙ্গ শিশুতে রূপ নেয় গর্ভধারণের পর পর এই ভ্রূণ যখন প্রথমবারের মতো আপনার জরায়ুতে নিজের জায়গা করে নেয় তখন সেই ঘটনাকে ইমপ্ল্যান্টেশন বলে এসময়ে তলপেটে কিছুটা ভোঁতা ধরনের মাসিকের ব্যথার মতো ব্যথা থাকতে পারে যে সময়টায় আপনার মাসিক হওয়ার কথা সাধারণত তার কাছাকাছি সময়ে দুইএক দিন ধরে এমন হালকা ব্যথা হয়ে থাকে জরায়ু পেটের অন্যান্য অঙ্গকে চাপ দেয় একারণে পেট ব্যথা হতে পারে অথবা পেট কামড়াতে পারে এ ধরনের ব্যথা সাধারণত তীব্র হয় না কিছুক্ষণের বিশ্রামেই ঠিক হয়ে যায় এ ছাড়াও গর্ভের সন্তান বড় হতে থাকলে পরিপাক নালীর ওপর চাপ বাড়তে থাকে চাপ বাড়ার কারণে হজমের গতি কমে গিয়ে পেট ফাঁপার সম্ভাবনা বেড়ে যায় একারণেও পেট ব্যথা হতে পারেগ্যাস পেট ফাঁপা ও কোষ্ঠকাঠিন্যগর্ভধারণের ফলে আপনার দেহে কিছু বিশেষ হরমোনের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায় এমন একটি হরমোন হলো প্রোজেস্টেরন এই হরমোনের প্রভাবে খাবার হজমের সাথে জড়িত পেশিগুলো কিছুটা শিথিল হয়ে আসে এবং হজমের গতি কমে যায় এতে করে আপনার পেটে গ্যাস তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পেট ফাঁপা লাগে অনেকের ক্ষেত্রে এই হরমোনের প্রভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য ও বায়ুর সমস্যা দেখা দেয় এসব কারণে পেট ব্যথা ও অস্বস্তি হতে পারেপড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপালিগামেন্টের ব্যথালিগামেন্ট হলো সুতার মতো কিছু টিস্যু শরীরের বিভিন্ন হাড় ও জয়েন্ট (গিরা) লিগামেন্টের মাধ্যমে একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকেগর্ভকাল বাড়ার সাথে জরায়ু দ্রুত পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় এসময়ে জরায়ুর আশেপাশের থাকা পেশি ও লিগামেন্টগুলো জরায়ুকে সাপোর্ট দিতে গিয়ে কিছুটা টান খায় ও পুরু হয়ে যায় এজন্য আপনার পেটে ব্যথা প্রায়ই আসা যাওয়া করতে পারে অথবা পেটে অস্বস্তি হতে পারে বিশেষ করে গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে জরায়ু প্রসারিত হয়ে জরায়ু ও কুঁচকির মাঝামাঝি থাকা রাউন্ড লিগামেন্টে টান পড়ে পেট ব্যথা হতে পারেউল্লেখ্য রাউন্ড লিগামেন্টের ব্যথা মূলত গর্ভাবস্থার ১৮ থেকে ২৪ সপ্তাহের মাঝে দেখা যায় এক্ষেত্রে আপনি নড়াচড়া করার সময়ে সাধারণত পেটের যেকোনো এক পাশে ধারালো ছুরির আঘাতের মতো ব্যথা অনুভব করতে পারেন তবে ব্যথা সাধারণত কয়েক সেকেন্ড পরে নিজে নিজেই উপশম হয়ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচনগর্ভাবস্থায় অনেক গর্ভবতীর মতো আপনিও ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন অনুভব করতে পারেন এতে মূলত পেটে হালকা কামড়ানো অথবা পেটের নির্দিষ্ট কোনো অংশে টান লাগার মতো এক ধরনের অনুভূতি হয় জরায়ুর অনিয়মিত সংকোচনপ্রসারণের কারণে সাধারণত দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে এই ধরনের অনুভূতি হয়ে থাকে এটি খানিকটা প্রসবের ব্যথার মতো মনে হতে পারে ব্র্যাক্সটন হিক্স সংকোচন নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই এটি আপনার গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদঅর্গাজম বা যৌন উত্তেজনার সময়ে ব্যথাসহবাসের সময়ে অর্গাজমের সময় কিংবা তার পরে পেট কামড়ানো অথবা ব্যথা হওয়া অস্বাভাবিক নয় এসময়ে এ ধরনের ব্যথার সাথে কোমর ব্যথাও হতে পারে অর্গাজমের সময়ে তলপেটে রক্তপ্রবাহ বেড়ে যায় এবং জরায়ুর সংকোচন হয় এর ফলে পেটে কামড়ানো অথবা টান লাগার মতো অনুভূতি হতে পারেআপনার যদি গর্ভাবস্থার সাথে সম্পর্কিত কোনো ঝুঁকি না থাকে কিংবা ডাক্তার যদি আপনাকে আগে থেকে সহবাস বা অর্গাজম সম্পর্কে নিষেধ না করে থাকেন তাহলে সাধারণত সহবাসে বা অর্গাজমের সময়ে এই ধরনের ব্যথা নিয়ে চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই সহবাস বা অর্গাজমএর পরে কিছুক্ষণ শুয়ে থাকলে অথবা একটু ঘুমিয়ে নিলে সাধারণত এই ধরনের ব্যথা চলে যায় তবে এই ধরনের ব্যথা অথবা পেট কামড়ানো নিয়ে দুশ্চিন্তা হলে একজন ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনপড়ুন গর্ভাবস্থায় সহবাস করার নিয়ম অধিকাংশ ক্ষেত্রেই পেট ব্যথা ঝুঁকির কারণ না হলেও কিছু ক্ষেত্রে পেট ব্যথা গুরুতর জটিলতা নির্দেশ করতে পারে এসব কারণের মধ্যে রয়েছে—জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ মায়ের ডিম্বাণু ও বাবার শুক্রাণুর মিলনের ফলে শিশুর ভ্রূণ সৃষ্টি হয় এই ভ্রূণই বড় হতে হতে পূর্ণাঙ্গ শিশুতে রূপ নেয় স্বাভাবিক গর্ভধারণের বেলায় ভ্রূণটি জরায়ুর ভেতরে জায়গা করে নেয় তবে কখনো কখনো ভ্রূণটি জরায়ুর বাইরে অস্বাভাবিক কোনো স্থানে (যেমন ডিম্বনালীতে) স্থাপিত হতে পারে এই ঘটনাকে ডাক্তারি ভাষায় এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বলে এই ধরনের গর্ভধারণে শিশুকে বাঁচানো সম্ভব হয় না এবং জরুরী ভিত্তিতে চিকিৎসার প্রয়োজন হয়৷ যদি ভ্রূণটি বেড়ে উঠতে থাকে তাহলে ডিম্বনালী অথবা অন্য অঙ্গ ফেটে গর্ভবতীর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে তাই দেরি না করে এক্টোপিক প্রেগন্যান্সির সঠিক চিকিৎসা নেওয়া খুবই জরুরিএক্টোপিক প্রেগন্যান্সির লক্ষণগুলো সাধারণত গর্ভাবস্থার ৪র্থ সপ্তাহ থেকে ১২তম সপ্তাহের মধ্যে দেখা যায় যার মধ্যে অন্যতম হলো পেট ব্যথা সাধারণত তলপেটের নিচের দিকে যেকোনো একপাশে ব্যথা হয় অন্যান্য লক্ষণগুলোর মধ্যে রয়েছে—যোনিপথে রক্তপাতকাঁধের আগায় ব্যপ্রস্রাব ও পায়খানা করার সময়ে ব্যথা বা অস্বস্তি যোনিপথ দিয়ে বাদামী রঙের পানির মতো তরল বের হওয়া এসব লক্ষণের মধ্যে যেকোনোটি দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যানগর্ভপাতগর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহের আগে গর্ভের শিশুর মৃত্যু হওয়াকে গর্ভপাত বলে এই সময়ে পেট ব্যথা অথবা পেট কামড়ানোর সাথে যোনিপথে রক্তপাত হলে সেটি কখনো কখনো গর্ভপাতের লক্ষণ হতে পারে অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—বমি বমি ভাব ও বযোনিপথ দিয়ে স্রাব জাতীয় তরল বের হওয়াযোনিপথ দিয়ে কোষগুচ্ছ বা টিস্যু বের হয়ে আসা গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলো (যেমন বমি বমি ভাব ও স্তনে ব্যথা) আর অনুভূত না হওয়া জ্বর দুর্বলতা ও অবসাদগর্ভপাতের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তার দেখানপ্রিএক্লাম্পসিয়াগর্ভাবস্থার শেষের দিকে বাচ্চার বৃদ্ধির ফলে জরায়ু ওপরের দিকে উঠে যেতে পারে এতে নিচের দিক থেকে পাঁজরে চাপ লেগে পাঁজরের ঠিক নিচে ব্যথা হতে পারে কিন্তু এ ব্যথা অসহ্যকর কিংবা একটানা হলে বিশেষ করে ডান পাশের পাঁজরের নিচে এমন ব্যথা হলে দ্রুত হাসপাতালে যেতে হবে এটি প্রিএক্লাম্পসিয়ার লক্ষণ হতে পারেপ্রিএক্লাম্পসিয়া গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপজনিত একটি মারাত্মক জটিলতা যা সাধারণত গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পর থেকে দেখা দিতে পারে পাঁজরের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথা হওয়া ছাড়াও নিচের চারটি লক্ষণের মধ্যে কোনোটি থাকলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যেতে হবে—তীব্র মাথা ব্যথা চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে যাওয়া অথবা চোখে আলোর ঝলকানির মতো কিছু দেখা হঠাৎ করেই পা হাত অথবা মুখ ফুলে যাওয়া ওপরের যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়াসময়মতো চিকিৎসা শুরু না করলে পরবর্তীতে এক্লাম্পসিয়া হতে পারে যা থেকে আপনি কোমায় চলে যেতে পারেন এমনকি আপনার ও গর্ভের শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারেঅকাল প্রসবনির্দিষ্ট সময়ের আগে সন্তান জন্মদানকে অকাল প্রসব বলা হয় গর্ভাবস্থার ৩৭তম সপ্তাহের আগে নিয়মিত বিরতিতে পেট কামড়ানো অথবা পেটে টান খাওয়া অকাল প্রসবের লক্ষণ হতে পারে এসময়ে কোমরেও ব্যথা হতে পারে এমন হলে আপনার হাসপাতালে ভর্তি থেকে ডাক্তারি পর্যবেক্ষণে থাকা প্রয়োজন অকাল প্রসবের অন্যান্য লক্ষণ হতে পারে—পানির মতো আঠালো অথবা রক্তমিশ্রিত স্রাব হওয়াস্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওযোনিপথে যেকোনো পরিমাণে পানি ভাঙাতলপেটে চাপ লাগা অথবা মৃদু ব্যথা হওএকটানা মৃদু ও চাপা ধরনের পিঠ ব্যথা হওয়া তলপেটে মৃদু ব্যথার সাথে ডায়রিয়া হওয়া গর্ভের শিশুর নড়াচড়া কমে যাওয়াপ্ল্যাসেন্টা বা গর্ভফুল ছিঁড়ে যাওয়াগর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পর প্ল্যাসেন্টা বা গর্ভফুল জরায়ুর দেয়াল থেকে হঠাৎ করেই আলাদা হয়ে যেতে পারে এসময়ে সাধারণত যোনিপথে ভারী রক্তপাতের পাশাপাশি একটানা তীব্র পেট ব্যথা হতে দেখা যায় পেটে চাপ দিলে পাথরের মতো শক্ত জরায়ু হাতে লাগে এই ব্যথা সহজে প্রশমিত হয় নাএটিও এক ধরনের জরুরি অবস্থা কারণ এসময় প্লাসেন্টা গর্ভের শিশুকে অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে পারে না তা ছাড়া অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা থাকায় মা ও শিশু উভয়ের জীবন হুমকির মুখে পড়তে পারে তাই এমন কোনো লক্ষণ থাকলে দেরি না করে হাসপাতালে যাওয়া খুবই জরুরিইউরিন বা প্রস্রাবের ইনফেকশনগর্ভাবস্থায় নারীদের প্রস্রাবের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়[৫] প্রস্রাবের ইনফেকশন হলে পেট ব্যথা হতে পারে এ ছাড়া প্রস্রাবের সময়ে জ্বালাপোড়া ও ব্যথা ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া ও প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারেপ্রস্রাবের ইনফেকশনের সঠিক চিকিৎসা না নিলে কিডনির ইনফেকশনসহ বিভিন্ন গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতা হতে পারে তাই এসময়ে প্রচুর পানি পান করুন এবং দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ইনফেকশন নিশ্চিত হলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনগর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক অথবা অন্য কোনো ধরনের ঔষধ সেবন করা বিপদজনক হতে পারে এজন্য এ অবস্থায় যেকোনো ঔষধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিনপড়ুন ইউরিন ইনফেকশন বা প্রস্রাবের সংক্রমণঅন্যান্য কারণপেট ব্যথার ওপরের কারণগুলো গর্ভধারণের সাথে সম্পর্কিত এমন কারণের বাইরে অর্থাৎ গর্ভাবস্থার সাথে সরাসরি সম্পর্ক নেই এমন কিছু কারণেও পেট ব্যথা হতে পারে গর্ভাবস্থার যেকোনো সময় এসব রোগের কারণে পেট ব্যথা হলেও জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—অ্যাপেন্ডিসাইটিস অ্যাপেন্ডিসাইটিসের সময় পেটের ডান পাশে নিচের দিকে ব্যথা হয় পেট ব্যথার পাশাপাশি ক্ষুধা কমে যাওয়া বমি ও বমি বমি ভাব ডায়রিয়া অথবা কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে কোলিসিস্টাইটিস বা পিত্তথলির প্রদাহ এ ধরনের ব্যথা পেটের ডান পাশে উপরের দিকে হয় এটি পেছনে এবং ডান পাশের কাঁধের দিকেও ছড়িয়ে যেতে পারে কিডনির পাথর এক্ষেত্রে পেটের যেকোনো একপাশে বেশ তীব্র ব্যথা হতে পারে এই ব্যথা সাধারণত আসাযাওয়া করে ব্যথার পাশাপাশি বমি ভাব অথবা বমি হতে পারে প্যানক্রিয়াটাইটিস এক্ষেত্রে সাধারণত পেটের মাঝখানে অথবা দুই পাঁজরের মাঝের অংশে ব্যথা হয় যা সময়ের সাথে তীব্র হতে থাকে এ ছাড়া বমি জ্বর বদহজম চোখত্বক হলুদ হয়ে যাওয়া ও নাড়ির গতি বেড়ে যাওয়াসহ নানান গুরুতর লক্ষণ দেখা দিতে পারেকখন ডাক্তারের কাছে যাবেন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথার পাশাপাশি নিচের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যাবেন—হঠাৎ করে তীব্র পেট ব্যথা অথবা কামড়ানো দেখা দিলেযোনিপথে রক্তপাত হলেনিয়মিত বিরতিতে পেট কামড়ানো অথবা পেটে টান পড়ার মতো অনুভূতি হমাসিকের রাস্তা দিয়ে অস্বাভাবিক স্রাব গেলেমাথা ঘুরালে অজ্ঞান হয়ে গেলে অথবা হঠাৎ করে অনেক ফ্যাকাশে হয়ে গেপায়খানার সাথে রক্ত গেলে অথবা তীব্র ডায়রিয়া হলেকোমর ব্যথা হলেপ্রস্রাবের সময়ে ব্যথা অথবা জ্বালাপোড়া হলে কিংবা রক্ত গেলে শরীরে কাঁপুনি অথবা জ্বর হলে হঠাৎ করেই পিপাসা বাড়ার পাশাপাশি প্রস্রাবের পরিমাণ কমে গেলে কিংবা প্রস্রাব একেবারে বন্ধ হয়ে গেলে আধা ঘণ্টা থেকে এক ঘন্টা বিশ্রাম নেওয়ার পরেও ব্যথা না কমলে এগুলো পেট ব্যথার কোনো গুরুতর কারণের লক্ষণ হতে পারে ক্ষেত্রবিশেষে সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা না পেলে মা ও গর্ভের শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে গর্ভাবস্থায় কখনো কখনো আপনার পা কামড়াতে বা খিল ধরতে পারে এটি মূলত পায়ে হঠাৎ করে তীক্ষ্ণ ব্যথা হওয়ার একটি অনুভূতি অনেকে এই সমস্যাকে পায়ের রগে টান লাগা বলে থাকেনগর্ভাবস্থায় কখনো কখনো আপনার পা কামড়াতে বা খিল ধরতে পারে এটি মূলত পায়ে হঠাৎ করে তীক্ষ্ণ ব্যথা হওয়ার একটি অনুভূতি অনেকে এই সমস্যাকে পায়ের রগে টান লাগা বলে থাকেনগর্ভাবস্থায় পা কামড়ানো মায়েদের একটি পরিচিত সমস্যা এটি সাধারণত মায়ের অথবা গর্ভের শিশুর কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করে না তবে পা কামড়ালে রাতে ঘুমাতে সমস্যা হতে পারে এবং দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত ঘটতে পারে কিছু সহজ উপদেশ মেনে চললে আপনি পা কামড়ানোর সমস্যা থেকে অনেকটাই স্বস্তি পেতে পারেন বেশিরভাগ সময়ে গর্ভকালের পরের অর্ধেকে অর্থাৎ ২০তম সপ্তাহের পর থেকে পা কামড়ানো বা খিল ধরার সমস্যা হয় বিশেষ করে গর্ভকালীন শেষ তিন মাসে এই সমস্যা হওয়া বেশ কমন অনেকের ক্ষেত্রেই কেবল রাতে পা কামড়াতে দেখা যায় তবে দিন অথবা রাত—যেকোনো সময়েই পা কামড়াতে পারে ঘরোয়া চিকিৎসা কামড়ানো উপশমে নিচের উপদেশগুলো প্রয়োগ করে দেখতে পারেন—পায়ের ব্যায়ামযখন আপনার পায়ের রগে টান লাগা বা পা কামড়ানো শুরু হবে তখনই দাঁড়িয়ে যাবেন এরপর পায়ের পাতা দুটিকে কিছুটা ভেতরের দিকে নিবেন এরপর পায়ের আঙুলের ওপর ভর দিয়ে উঁচু হতে চেষ্টা করবেন যেন আপনি উঁচুতে থাকা কোনো কিছুর নাগাল পাওয়ার চেষ্টা করছেন এভাবে পায়ের পেছনের পেশি টানটান করার চেষ্টা করবেন এতে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে[৪]ইউটিউবে Calf Stretches (Toe Raises) লিখে সার্চ করলে এমন ভিডিও দেখতে পাবেন সেগুলো দেখে দেখেও এই ব্যায়াম করতে পারেনপা কামড়ানো শুরু হওয়ার সাথে সাথে কিছুদূর হেঁটে অথবা পা ঝাঁকিয়ে এরপর পা উঁচু করলে এই অনুভূতি উপশম হতে পারেপায়ের আঙুলগুলো সজোরে ওপরের দিকে টানটান করলে অথবা পায়ের পেশি জোরে জোরে ঘষলে কামড়ানো উপশম হতে পারেগরম পানি দিয়ে গোসলকুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলে স্বস্তি পেতে পারেন এ ছাড়া পায়ের পেছনে হাঁটুর ঠিক নিচের মাংসল অংশে হট ওয়াটার ব্যাগ দিয়ে গরম সেঁক দিতে পারেন তবে হট ওয়াটার ব্যাগ ব্যবহার করার সময়ে সাবধান থাকবেন পানি সহনীয় তাপমাত্রায় আছে কি না এবং ব্যাগের মুখ ভালোভাবে আটকানো আছে কি না তা দেখে নিবেন নির্দিষ্ট সময় পরপর ব্যাগ উল্টেপাল্টে দিবেনবরফের সেঁকপায়ে আলতোভাবে ঘষে ঘষে বরফ লাগাতে পারেনঔষধগর্ভাবস্থায় পা কামড়ানোর জন্য ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ভিটামিন বি ভিটামিন সি ও ভিটামিন ডি এর মতো বিভিন্ন ঔষধ নিয়ে গবেষণা করা হয়েছে তবে সেগুলোর কার্যকারিতা এবং মা ও শিশুর ওপর এসবের প্রভাব গবেষণা থেকে পুরোপুরি পরিষ্কার নয়[৬] তাই ঘরোয়া উপদেশ মেনে চলার পরেও কোনো উন্নতি না হলে নিজে নিজে ঔষধ সেবন না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ব্যায়ামপা কামড়ানো ঠেকাতে পায়ের কিছু ব্যায়াম করে দেখতে পারেন এসব ব্যায়াম পায়ের পেশির ওপর কাজ করে এবং ব্যথা ও খিঁচ ধরা কমাতে সাহায্য করেব্যায়াম ১ স্ট্রেচিংওপরের ছবির মতো দেয়ালের দিকে মুখ করে দাঁড়ান এমনভাবে দাঁড়াবেন যেন দুই পা একত্র থাকে আর পা দেয়াল থেকে প্রায় ২ ফুট দূরে থাকে খেয়াল রাখবেন যেন আপনি সোজা হয়ে দাঁড়ালে আপনার দুই পা মেঝেতে সমান হয়ে থাকে আর দুই হাত সোজা করলে যেন হাতদুটো দেয়ালকে স্পর্শ করে এবার শরীর সোজা রেখে অর্থাৎ হাঁটু ও কোমর কোনোদিকে ভাঁজ না করে দেয়ালের দিকে সামান্য ঝুঁকে যান সামনের দিকে সামান্য ঝুঁকে হাতের তালু দিয়ে দেয়ালে চাপ দিন যেন মনে হয় আপনি দেয়ালকে ধাক্কা দিচ্ছেন এই অবস্থায় দেখবেন যে আপনার পায়ের পেছনের পেশিগুলোতে টান লাগছে ২০ সেকেন্ড ধরে এই অবস্থানে থাকুন এরপর সোজা হয়ে দাঁড়ান আবারও প্রথম থেকে ব্যায়াম করুন এভাবে পরপর মোট তিনবার ১ থেকে ৩ নম্বর ধাপ অনুসরণ করুন এভাবে দিনে চারবার করে এক সপ্তাহ ব্যায়াম করবেন এরপর থেকে দিনে দুইবার করে ব্যায়াম করা চালিয়ে যাবেন[৭]ব্যায়াম ২ পায়ের গোড়ালির ব্যায়ামআপনার গোড়ালির জয়েন্ট ভাঁজ করে পায়ের পাতা একবার নিজের বা ওপরের দিকে ওঠান আরেকবার টানটান করে দ্রুত নিচের দিকে নামান এভাবে জোরে জোরে মোট ৩০ বার করবেন ডান পায়ের পাতা বৃত্তাকারে অর্থাৎ ঘড়ির কাঁটার মতো করে ঘুরান একবার ঘড়ির কাঁটা যেদিকে ঘুরে সেদিকে অর্থাৎ ডান দিকে ৮ বার ঘোরাবেন এরপর ঘড়ির কাঁটা যেভাবে ঘুরে তার বিপরীত দিকে আরও ৮ বার ঘোরাবেন এভাবে মোট ১৬ বার ঘুরাতে হবে একই নিয়মে বাম পায়ের ব্যায়াম করুনঅন্যান্য উপায়পা কামড়ানো প্রতিরোধে ব্যায়ামের পাশাপাশি যেসব উপায় অবলম্বন করতে পারেন—১ পর্যাপ্ত পানি পান করা পর্যাপ্ত পানি পান করার মাধ্যমে পা কামড়ানো উপশম করা যেতে পারে একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটাই অনুসরণ করবেন২ আরামদায়ক জুতা পরা পায়ের গোড়ালিকে সাপোর্ট দেয় এমন আরামদায়ক জুতা বেছে নিতে পারেন৩ শরীর সচল রাখা নিয়মিত শরীর সচল রাখার মাধ্যমে পায়ে খিঁচ ধরার সম্ভাবনা কমানো যেতে পারে নিয়মিত হাঁটার চেষ্টা করবেন হাঁটার পরিবর্তে আপনার জন্য সুবিধাজনক কয়েকটি ব্যায়াম বেছে নিতে পারেন এ ছাড়া একই অবস্থানে অনেকক্ষণ বসে অথবা দাঁড়িয়ে থাকা এড়িয়ে চলবেন কেউ কেউ বসার সময়ে পায়ের ওপরে পা তুলে বসা এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেন৪ কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়া সারাদিনের কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিশ্রাম নিয়ে নিবেন একটানা অনেকক্ষণ কাজ করা এবং একটানা শুয়ে থাকা—দুটোই এড়িয়ে চলবেন যখন বসে সময় পার করতে হবে চেষ্টা করবেন পা দুটো উঁচু অবস্থানে রাখতে এজন্য একটা টুলের ওপরে পা রাখতে পারেন এ ছাড়া বসে বিশ্রাম নিতে নিতে খেতে খেতে অথবা টিভি দেখতে দেখতে পায়ের আঙুলগুলো নাড়াচাড়া করবেন এবং পায়ের পাতা একটু ঘুরিয়েফিরিয়ে নিবেন৫ সুষম খাবার খাওয়া আপনার খাবারে যেন প্রয়োজনীয় সব ধরনের পুষ্টি উপাদান থাকে সেদিকে খেয়াল রাখবেন সুষম খাবার তালিকা মেনে চলার মাধ্যমে আয়রন ক্যালসিয়াম ম্যাগনেসিয়াম ও বিভিন্ন ভিটামিনের অভাব প্রতিরোধ করা যাবে যদি ব্যথা তীব্র হতে থাকে অথবা একটানা ব্যথা হয় তাহলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে তা ছাড়া পায়ে ব্যথার সাথে যদি ব্যাথার জায়গা গরম হয়ে যায় ফুলে যায় অথবা লালচে হয়ে যায় তাহলে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি এটি ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস নামক মারাত্মক রোগের লক্ষণ হতে পারেডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস হলে পায়ের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধে এই জমাট বাঁধা রক্ত পায়ের রক্তনালী থেকে ছুটে রক্তের সাথে শরীরের অন্যান্য অংশের রক্তনালীতে যেয়ে রক্তপ্রবাহে বাধা সৃষ্টি করতে পারে ফুসফুসে এমন হলে শ্বাসপ্রশ্বাসে মারাত্মক সমস্যা দেখা দিতে পারে এমনকি রোগীর মৃত্যু হতে পারে এটি বিরল রোগ হলেও গর্ভাবস্থায় এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি তাই এই রোগের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে অবিলম্বে চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন গর্ভাবস্থায় কী কারণে পায়ে এই ধরনের অনুভূতি হয় তা এখনো সুনিশ্চিতভাবে জানা যায়নি তবে এর পেছনে নিচের কারণগুলোর ভূমিকা থাকতে পারে—পায়ে বিশেষ কিছু এসিড (যেমন ল্যাকটিক এসিড) জমার কারণে পায়ের পেশি নিজে নিজে সংকুচিত হয়ে পা কামড়াতে পারে শরীরে ইলেক্ট্রোলাইট অর্থাৎ নির্দিষ্ট কিছু লবণের পরিমাণ ওঠানামা করলে পায়ে আপনাআপনি সংকোচন হয়ে পা কামড়াতে পারে গর্ভের শিশুর বাড়তি ওজন বহন করার ফলে পায়ে চাপ পড়ার কারণে পা কামড়াতে পারে গর্ভাবস্থায় সারা শরীরের পাশাপাশি পায়ের রক্ত সরবরাহে পরিবর্তন আসে একারণেও পা কামড়াতে পারে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ক্লান্তি থেকে পায়ে খিল ধরতে পারে গর্ভকালীন সময়ে শরীরে কিছু হরমোনের মাত্রা অনেক বেশি থাকে হরমোনজনিত পরিবর্তনের কারণে শরীরে বিভিন্ন ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে পা কামড়ানোও এমন একটি লক্ষণ হতে পারে খাবার তালিকায় ফসফরাসযুক্ত খাবার বেশি থাকলে এবং ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামযুক্ত খাবার কম থাকলে এমন হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে পায়ের গভীরে থাকা শিরায় রক্ত জমার কারণে পা ফুলে যাওয়ার পাশাপাশি পায়ে ব্যথা ও কামড়ানোর মতো অনুভূতি হতে পারে যেমন ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস এসব লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি গর্ভাবস্থায় অর্ধেকের বেশি নারীর হাত ঝিনঝিন করছে বা অবশ হয়ে আসছে বলে মনে হয়ে থাকে বিশেষ করে হাত দিয়ে একটানা অনেকক্ষণ একই ধরনের কাজ করলে এমন অনুভূতি হয় যেমন লেখালেখি টাইপ করা অথবা সেলাই করা একে ডাক্তারি ভাষায় কারপাল টানেল সিন্ড্রোম বলা হয়গর্ভাবস্থায় অর্ধেকের বেশি নারীর হাত ঝিনঝিন করছে বা অবশ হয়ে আসছে বলে মনে হয়ে থাকে এক্ষেত্রে কোনো কাজ করার পর হাত কবজি অথবা আঙুলে এমন ঝিনঝিন করার পাশাপাশি হালকা ব্যথা জ্বালাপোড়া অথবা অবশ হয়ে আসার মতো সমস্যা হতে পারে কিছু ঘরোয়া উপদেশ মেনে চলার মাধ্যমে এই সমস্যাগুলো নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় গর্ভাবস্থায় কার্পাল টানেল সিন্ড্রোমের নানান ধরনের লক্ষণ দেখা দিতে পারে সাধারণত রাতে ও ভোরবেলা লক্ষণগুলোর তীব্রতা বেড়ে যায় হাতের আঙুল হাত কবজি এমনকি কাঁধ পর্যন্ত এসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে—হাত অসাড় হয়ে আসাসুঁই ফুটানোর মতো খোঁচা খোঁচা অনুভূতি হওয়াব্যথা হওয়া—এক্ষেত্রে দপদপে ভোঁতা তীক্ষ্ণ বা ধারালো ব্যথা হতে পাহাত ফুলে যাওয়াআঙুল গরম হয়ে হওহাত দিয়ে কোনো কিছু ধরতে কিংবা ধরে রাখতে কষ্ট হওয়াহাতের বিশেষ করে বৃদ্ধাঙ্গুলির কাজের দক্ষতা কমে যাওয়া এক্ষেত্রে হাত দিয়ে বোতাম লাগানোর মতো সূক্ষ্ম কাজের ক্ষমতা কমে যেতে পারে সাধারণত গর্ভাবস্থায় হাতে ঝিনঝিন করার সমস্যাটা শেষ ত্রৈমাসিকেই বেশি দেখা দেয় তবে শরীরের ওজন বৃদ্ধি এবং অন্যান্য বিষয়ের ওপর ভিত্তি করে এর আগেও এমনটা হতে পারে৷সাধারণত প্রসবের পর শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে শুরু করলে হাত ঝিনঝিন করার সমস্যাটাও কমতে থাকে তবে এটি সম্পূর্ণভাবে চলে যেতে প্রসবের প্রায় ছয় সপ্তাহ পর্যন্ত সময় লাগতে পারে৷ যদি এরপরও সমস্যাটি থেকে যায় তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে আমাদের হাতের অনেকগুলো নার্ভ বা স্নায়ুর মধ্যে একটি হলো মিডিয়ান নার্ভ এটি হাতের বিভিন্ন অংশ ও বৃদ্ধাঙ্গুলির নড়াচড়া নিয়ন্ত্রণ করে সেই সাথে হাত ও কব্জির অনেকখানি অংশের অনুভূতি বহনের কাজ করে এই মিডিয়ান নার্ভ বগলের কাছ থেকে শুরু হয় এরপরে নিচে নামতে নামতে কব্জিতে থাকা কার্পাল টানেল নামক অংশের ভেতর দিয়ে ঢুকে হাতের আঙুলে গিয়ে শেষ হয়কোনো কারণে কব্জির কাছাকাছি অংশে এই নার্ভের ওপর চাপ পড়লে নার্ভের স্বাভাবিক কাজ বাধাপ্রাপ্ত হয় একারণেই মূলত কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম বা হাত ঝিনঝিন করার সমস্যা দেখা দেয়ছবি মিডিয়ান নার্ভে চাপ পড়ার ফলে কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম সৃষ্টি হওয়াকার্পাল টানেল সিন্ড্রোম যেকোনো এক কিংবা উভয় হাতে হতে পারে এতে মৃদু থেকে তীব্র—যেকোনো মাত্রায় সমস্যা অনুভব হতে পারে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে মিডিয়ান নার্ভে চাপ পড়ে থাকে যেমন—গর্ভাবস্থায় হাতে পানি এসে হাত ফুলে যাওয়ার কারণে মিডিয়ান নার্ভের ওপর চাপ পড়ে৷ ফলে হাত ঝিনঝিন ও ব্যথা করতে পারেগর্ভাবস্থায় বাড়তি ওজনের কারণে এমন হতে পারে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে অতিরিক্ত ওজনের অধিকারীদের মধ্যে কার্পাল টানেল সিন্ড্রোম হওয়ার প্রবণতা বেশিকব্জির ওপর ভার দিয়ে করা হয় এমন কোনো কাজ অনেকক্ষণ ধরে করতে থাকলে মিডিয়ান নার্ভের ওপর চাপ পড়তে পারে বিশেষ করে কেউ যদি অফিসে অথবা বাসায় ডেস্কে বসে কাজ করেন তাদের ক্ষেত্রে এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা বেশিধূমপান ও মদপান করলে গর্ভাবস্থায় হাত ঝিনঝিন করার ঘটনা বেড়ে যেতে পারে এগুলো হাতের স্বাভাবিক রক্ত চলাচলে বাধা সৃষ্টি করার কারণে এমন হয় বলে ধারণা করা হয়এই সমস্যা সাধারণত রাতে ঘুমানোর সময়ে বেশি দেখা দেয়৷ কারণ শোয়ার পর শরীরের নিচের অংশের রক্ত পুরো শরীরে ছড়িয়ে যায়৷ ফলে বাড়তি রক্তের কারণে হাতের নার্ভগুলোর ওপর চাপ পড়ে হাত ঝিনঝিন বা অসাড় হয়ে আসার সমস্যা সারিয়ে তুলতে বেশ কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করা যায় যেমন—১ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া হাত ঝিনঝিন করলে হাত দিয়ে অতিরিক্ত কাজ করা থেকে বিরত থাকা উচিত হাত দুটোকে যথাসম্ভব বিশ্রাম দেওয়ার চেষ্টা করুন একটা বালিশের ওপরে হাত রেখে হাতকে বিশ্রাম দিতে পারেন২ ব্যথার জায়গায় বরফ বা ঠান্ডা পানি ব্যবহার একটু মোটা ধরনের একখণ্ড নরম সুতি কাপড়ে কয়েক টুকরো বরফ জড়িয়ে ব্যথার জায়গায় ধরে রাখলে আরাম পাবেন ঠান্ডা পানিতে ১০ মিনিটের মতো হাতের কব্জি ডুবিয়ে রাখলেও ব্যথা কমে আসতে পারে এ ছাড়া পর্যায়ক্রমে এক মিনিট গরম পানির সেঁক আরেক মিনিট ঠাণ্ডা পানির সেঁক—এভাবে ৫–৬ মিনিট ধরে সেঁক দিতে পারেন৩ বিশ্রামের সময় হাতের পজিশন ঠিক রাখা কাজ করার সময়টুকু ছাড়া বাকি সময়ে হাত দুটোকে উঁচু করে বা ওপরে তুলে রাখতে পারেন এতে হাত ফুলে থাকলে সেই ফোলা কমে আসবে প্রয়োজনে হাতের নিচে বালিশ বা কুশন ব্যবহার করতে পারেন যে হাতে ব্যথা হয় সে হাতের ওপর কাত হয়ে শোয়া থেকে বিরত থাকুন সেই সাথে হাত ঝিনঝিন করার সমস্যা এড়াতে ঘুমানোর সময়ে হাতের ওপর ভার দেওয়া থেকে বিরত থাকুন ঘুমানোর সময়ে হাত বিছানার বাইরে ঝুলিয়ে দিলে এবং কিছুটা ঝাঁকালে ব্যথা কমে আসতে পারে৪ হাতে ব্রেইস বা বেল্ট পরা আপনার যদি হাতে অনেক বেশি ব্যথা হতে থাকে তাহলে ঘুমানোর সময়ে কবজিতে ব্রেইস বা বেল্ট পরতে পারেন এটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে এসব Wrist Brace নামে ফার্মেসিতে কিনতে পাওয়া যায়৫ কাজের সময়ে সঠিক দেহভঙ্গি মেনে চলা অনেকক্ষণ ধরে ডেস্কে বসে (যেমন কম্পিউটারে) কাজ করলে চেষ্টা করুন হাতের অবস্থান ঠিক রাখতে টাইপ করার সময়ে খেয়াল করুন হাতের কবজি যেন সোজা থাকে এবং কনুই যেন হাতের চেয়ে কিছুটা উঁচুতে থাকে এমনটা করলে হাতের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক থাকবে ফলে ব্যথা কমে আসতে পারে ৬ হাতের রক্ত প্রবাহ স্বাভাবিক রাখা হাতের রক্ত প্রবাহ ঠিক রাখতে হাত একই রকম ভঙ্গিতে রেখে অনেকক্ষণ ধরে করতে হয়—এমন কাজ যতটা সম্ভব কমিয়ে দিন সারাদিনে কাজের ফাঁকে অথবা অবসরে দুই হাত স্ট্রেচিং অথবা হালকা ব্যায়াম করে নিতে পারেন৭ লবণ খাওয়া কমানো গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত লবণ খেলে গায়ে পানি আসা বা হাতপা ফুলে যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়৷ তাই এসময়ে যতটা সম্ভব লবণ কম খাওয়ার চেষ্টা করুন৮ বিকল্প চিকিৎসা পদ্ধতি ব্যবহার অনেকে হাত ব্যথার জন্য আকুপাংচার জাতীয় থেরাপি নিয়ে সুফল পেয়ে থাকেন তবে গর্ভাবস্থায় এ ধরনের কোনো থেরাপি নেওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত৯ ঔষধের সাহায্যে নিয়ন্ত্রণ ওপরের ঘরোয়া পদ্ধতি অবলম্বন করে হাত ঝিনঝিন না কমলে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করতে পারেন তবে মনে রাখতে হবে গর্ভাবস্থায় সব ধরনের ব্যথানাশক ঔষধ সেবন নিরাপদ নয় তাই এসময়ে ঔষধ সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নেওয়া উচিতকার্পাল টানেল এক্সারসাইজ কার্পাল টানেল সিন্ড্রোমের জন্য হাতের কিছু বিশেষ ব্যায়ামের পরামর্শ দেওয়া হয় এগুলো খুবই সহজ বাসায় বসে নিজে নিজেই কর‍তে পারবেন—কবজির ব্যায়ামআপনার হাত প্রথম ছবির মতো করে টেবিলের ওপরে একটা সুবিধাজনক অবস্থানে রাখুন যেন হাতটা টেবিলের কিনারায় ঝুলে থাকে এরপর দ্বিতীয় ছবির মতো করে হাত টেবিল থেকে না সরিয়ে আঙুলগুলোকে ওপরে ওঠান এবং কবজি ওপরের দিকে ভাঁজ করুন এবার কবজি নিচের দিকে ভাঁজ করুন এবং আঙুলগুলো নিচে নামান এভাবে মোট ১০ বার ওপরনিচ করুন এই ব্যায়ামে অভ্যস্ত হয়ে গেলে পরবর্তীতে আঙুলগুলো ওপরে তোলার সময়ে হাতের ওপরে হালকা কিছু রেখে প্র‍্যাকটিস করুন যেমন ছোটো একটি আপেল মানিব্যাগ ঔষধের বোতল অথবা একটি বালা আঙুলের ব্যায়াম ছবি আঙুলের ব্যায়াম বাহুসহ পুরো হাতকে আরামদায়ক অবস্থানে রাখুন হাতের পাতা দ্বিতীয় ছবির মতো ছড়িয়ে রাখুন এরপর হাতের আঙুলগুলো প্রথম ছবির মতো মুষ্টিবদ্ধ করুন এভাবে ১০ বার মুষ্টি বাঁধুন আর খুলুন গর্ভধারণের পর পরই অনেকের স্তনে হালকা ব্যথা বা চাপ চাপ লাগতে পারে এটি গর্ভাবস্থার খুবই কমন একটি লক্ষণ এ নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার কিছু নেই গর্ভাবস্থায় কিছু ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়ে আপনি অনেকাংশেই স্তনের ব্যথা কমিয়ে আনতে পারবেনগর্ভধারণের পর পরই অনেকের স্তনে হালকা ব্যথা বা চাপ চাপ লাগতে পারে এটি গর্ভাবস্থার খুবই কমন একটি লক্ষণ এ নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার কিছু নেই গর্ভাবস্থায় কিছু ঘরোয়া উপায় কাজে লাগিয়ে আপনি অনেকাংশেই স্তনের ব্যথা কমিয়ে আনতে পারবেন গর্ভধারণের ফলে শরীরে বিভিন্ন হরমোনের পরিমাণ ওঠানামা করে যেমন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন পাশাপাশি শরীরে রক্ত সরবরাহ বেড়ে যায় এসব পরিবর্তনের প্রভাবে স্তন ও স্তনের বোঁটা স্পর্শকাতর হয়ে ওঠে ফলে আপনার স্তনে ব্যথা হতে পারেএ ছাড়া শিশুর জন্মের পরে তার পুষ্টির চাহিদা পূরণের প্রস্তুতি হিসেবে গর্ভাবস্থায় আপনার স্তনে ফ্যাট বা চর্বি জমা হতে থাকে পাশাপাশি স্তনের ভেতরে থাকা দুধ তৈরির নালিকাগুলো প্রশস্ত হতে থাকে সব মিলিয়ে গর্ভাবস্থায় স্তনের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায় একারণেও স্তনে ব্যথা হতে পারে স্তনে ব্যথার ধরন একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হতে পারে যেমন—স্তন ভারী অথবা চাপ চাপ লাগাটনটনে ব্যজ্বালাপোড়াখোঁচা খোঁচা বা শিরশিরে অনুভূতিধারালো বা তীক্ষ্ণ ব্যথাপুরো স্তন জুড়ে ভোঁতা ধরনের ব্যথাস্তনের বোঁটা থেকে শুরু করে স্তনের যেকোনো অংশে এমনকি পুরো স্তনজুড়েও ব্যথা হতে পারে গর্ভাবস্থায় সাধারণত উভয় স্তনেই ব্যথা হয় তবে যেকোনো একটি স্তনেও ব্যথা হতে পারে উল্লেখ্য স্তনের ব্যথা কখনো কখনো বগল কাঁধ অথবা হাতে ছড়িয়ে পড়তে পারেতবে ব্যথার ধরন যেমনই হোক না কেন সেটা যদি আপনার জন্য খুব বেশি অস্বস্তির কারণ না হয় এবং আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত না করে তাহলে এই ব্যথা নিয়ে খুব বেশি চিন্তা করার প্রয়োজন নেইব্যথার ধরনের পাশাপাশি ব্যথার তীব্রতাও একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হতে পারে এসময়ে আপনার স্তন হাত দিয়ে স্পর্শ করলে হালকা ব্যথা লাগতে পারে আবার অনেকের ক্ষেত্রে ব্রা পরলেই তীব্র ব্যথা শুরু হতে পারে স্তনে হালকা অথবা তীব্র ব্যথা হওয়া—দুটোই স্বাভাবিকগর্ভাবস্থায় স্তনের এই স্পর্শকাতরতা বা ব্যথার কারণে অনেক দম্পতি এসময়ে সহবাস এড়িয়ে চলেন তবে স্তনে ব্যথার ধরন ও তীব্রতা যদি আপনার জন্য অস্বস্তির কারণ না হয় তাহলে গর্ভাবস্থায় সহবাস চালিয়ে যেতে কোনো বাধা নেই সাধারণত গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে অর্থাৎ প্রথম তিন মাসের মধ্যে স্তনে ব্যথা বা চাপ লাগার সমস্যাটা দেখা দেয় এমনকি গর্ভধারণের তৃতীয়চতুর্থ সপ্তাহ থেকেই এমন ব্যথা শুরু হয়ে যেতে পারে প্রথম তিন মাসের পরে কারও কারও ক্ষেত্রে এই ব্যথা কমে আসতে পারেগর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসে আপনার স্তন শিশুকে দুধপান করানোর জন্য চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিতে থাকে তাই এসময়ে এসে আবার স্তনে ব্যথা শুরু হতে পারে এ ছাড়া শিশুর জন্মের পর তাকে দুধ খাওয়ানোর সময়টাতেও অনেকের স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগতে পারে বিশেষ করে স্তনের বোঁটায় ব্যথা হতে পারে এটাও খুবই কমন এ নিয়ে সাধারণত চিন্তিত হওয়ার কিছু নেই এরপরে সাধারণত স্তনের ব্যথা চলে যায়কখন ডাক্তারের কাছে যাবেন যদি আপনার স্তনে অস্বাভাবিক ব্যথা হয় ব্যথা ক্রমেই বাড়তে থাকে কিংবা অনেকদিন ধরে ব্যথা হতে থাকে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ব্যথা ছাড়াও স্তনে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তার দেখিয়ে নিতে হবে অস্বাভাবিক পরিবর্তনগুলোর মধ্যে রয়েছে—স্তনে অথবা বগলে চাকা বা দলার ন্যায় অনুভব করাস্তনের কোনো অংশ ফুলে যাওস্তনে অস্বাভাবিক ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হওয়াস্তনের বোঁটা থেকে রক্ত পুঁজ কিংবা কোনো অস্বাভাবিক তরল নিঃসৃত হওস্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়াস্তনের চামড়ায় চুলকানি হওয়া অথবা তা লালচে হয়ে যাওস্তনের চামড়ায় টোল বা গর্তের মতো হওয়াস্তনের আকারআকৃতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করা এসব লক্ষণের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হয়তো স্বাভাবিক তবে এগুলো স্তনের বিশেষ কোনো রোগ—এমনকি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে তাই অবহেলা না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়াই শ্রেয় স্তনের ব্যথা ও চাপ চাপ লাগার অনুভূতি আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত না করলে এই ব্যথা নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই গর্ভাবস্থায় স্তনে ব্যথা কমানোর জন্য সাধারণত ঔষধ খাওয়ারও প্রয়োজন পড়ে না কিছু ঘরোয়া উপায় মেনে চলার মাধ্যমেই এই ব্যথা অনেকাংশে কমানো যায় যেমন—ভালো সাপোর্টযুক্ত আরামদায়ক ব্রা ব্যবহার করবেন নিশ্চিত করতে হবে যে আপনি যেসব ব্রা ব্যবহার করছেন সেগুলো সঠিক সাইজের এবং খুব বেশি টাইট বা আঁটসাঁট নারাতে ঘুমানোর সময়ে নরম সুতি কাপড়ের স্পোর্টস ব্রা বা হুক ছাড়া ব্রা ব্যবহার করতে পারেন এতে শোয়ার সময়ে পাশ পরিবর্তন করলে যে ব্যথা হয় সেটি কমতে পারেবরফ বা ঠান্ডা কিছু (যেমন ফ্রোজেন মটরশুঁটি) একটা নরম ও মোটা সুতির গামছা কিংবা তোয়ালেতে জড়িয়ে স্তনে লাগাতে পারেন এতে ব্যথা কমে গিয়ে আরাম লাগতে পারে উল্লেখ্য একটানা ২০ মিনিটের বেশি সময় ধরে বরফ না লাগানোই শ্রেয় উষ্ণ বা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করতে পারেন এতেও কারও কারও ব্যথা উপশম হয়গর্ভাবস্থায় আরামদায়ক ও ঢিলেঢালা কাপড় পরার চেষ্টা করবেন এতে স্তনে চাপ কম পড়বেবেশি বেশি ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খাবেন এবং ক্যাফেইন জাতীয় খাবার ও পানীয়ের পরিমাণ কমিয়ে দিবেন কারও কারও ক্ষেত্রে এগুলো স্তনের ব্যথা কমাতে সহায়তা করেব্রা এর সঠিক সাইজ বের করার পদ্ধতি ব্রা এর যেই অংশ স্তনকে ঢেকে রাখে সেটি হলো ব্রা এর কাপ আপনার জন্য সঠিক কাপ সাইজ হিসাব করতে প্রথমে স্তনের নিচের অংশ ইঞ্চি ফিতা দিয়ে মেপে নিন এটিকে আন্ডার বাস্ট বলে এরপর স্তনের সবচেয়ে বড় বা স্ফীত অংশ বরাবর ফিতা বসিয়ে আবার মাপুন এটিকে বাস্ট বলে এবার বাস্ট এর মাপ থেকে আন্ডার বাস্ট এর মাপ বিয়োগ করে এদের মধ্যে পার্থক্য বের করুন পার্থক্য কাপ সাইজ১ ইঞ্চি এ২ ইঞ্চি বি৩ ইঞ্চি সি৪ ইঞ্চি ডিসম্ভব হলে অবশ্যই কেনার আগে দোকানে ট্রায়াল দিয়ে ব্রা ঠিকমতো ফিট হয় কি না সেটি দেখে নিতে পারেনছবি বামে আন্ডারবাস্ট ও ডানে বাস্ট সাইজ মাপার পদ্ধতি গর্ভাবস্থায় পরার উপযোগী নার্সিং ব্রা অথবা হুক ছাড়া আরামদায়ক সুতির ব্রা এসময়ে বেশি আরামদায়ক হতে পারে সম্ভব হলে ঘুমানোর সময়ে বিশেষ স্লিপিং ব্রা ব্যবহার করুন এ ছাড়া ব্যায়াম করার সময়ে ভালো সাপোর্টযুক্ত স্পোর্টস ব্রা ব্যবহার করবেন এগুলো বাড়ন্ত স্তনকে সাপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারেগর্ভাবস্থায় স্তনে ব্যথার ঔষধওপরের উপদেশগুলো মেনে চলার পরেও ব্যথা না কমলে প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনঅন্য যেকোনো ব্যথানাশক (যেমন ননস্টেরয়েডাল প্রদাহনাশক) ট্যাবলেট ক্রিম অথবা জেল ব্যবহারের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিবেন বিভিন্ন ব্যথানাশক ঔষধ আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে গর্ভাবস্থায় দাঁত ক্ষয় ও মাড়ির বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায় এই সংক্রান্ত জটিলতা এড়ানোর সহজ উপায় হলো মুখের পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা পাশাপাশি দাঁতের ডাক্তার বা ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণগর্ভাবস্থায় দাঁত ক্ষয় ও মাড়ির বিভিন্ন রোগের সম্ভাবনা বেড়ে যায় এই সংক্রান্ত জটিলতা এড়ানোর সহজ উপায় হলো মুখের পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা পাশাপাশি দাঁতের ডাক্তার বা ডেন্টিস্টের পরামর্শ নেওয়াও গুরুত্বপূর্ণ গর্ভাবস্থায় আপনি মুখের ভেতরে কিছু পরিবর্তন লক্ষ করতে পারেন যেমন—আপনার মাড়ি ফুলে যাওয়া মাড়ি থেকে রক্ত পড়া দাঁত মাজার সময়ে থুতুর সাথে আপনি হালকা গোলাপি অথবা টকটকে লাল রক্ত খেয়াল করতে পারেনদাঁত ব্যথা হওয়াদাঁতে ছোটো ছোটো গর্ত হওয়াদাঁতে পাথর হওদাঁত নড়বড়ে হয়ে যাওয়া এমনকি পড়ে যাওয়া গর্ভকালের প্রথম ট্রাইমেস্টার থেকেই কারও কারও মাড়ি ফুলে যেতে পারে এবং মাড়ি থেকে রক্তক্ষরণ হতে পারে তবে সাধারণত গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে এই সমস্যার প্রকোপ বাড়ে তৃতীয় ট্রাইমেস্টারে মাড়ি ফোলা ও রক্ত পড়ার ঘটনা সাধারণত সবচেয়ে বেড়ে যায় এসময় সঠিক চিকিৎসা না নিলে মাড়ি ও মুখের হাড়ের ইনফেকশন হতে পারে এর ফলে দাঁত পড়ে যেতে পারে এমনকি ইনফেকশন সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে গর্ভাবস্থায় মাড়ির সমস্যা হওয়ার পেছনে কিছু কারণ থেকে থাকে যেমন— ১ হরমোনের তারতম্য গর্ভকালে আপনার শরীরে কিছু হরমোনের মাত্রা অনেক বেড়ে যায় এর ফলে শরীরে নানান ধরনের পরিবর্তন হয় এর মধ্যে অন্যতম হলো আপনার মুখের ভেতরের ব্যাকটেরিয়ার ভারসাম্যে পরিবর্তন আসা একারণে দাঁতের মাড়িতে প্রদাহ হতে পারে এবং মাড়ি ফুলে যেতে পারে এতে মাড়ি দুর্বল হয়ে পড়ে এবং দাঁত ও মাড়ির নানান ক্ষতি হবার সম্ভাবনা বেড়ে যায়২ খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন গর্ভকালে আপনার চিনিযুক্ত খাবার ও শর্করা খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে এর ফলে দাঁতে প্ল্যাক হওয়া দাঁত ক্ষয় ও ক্যাভিটি বা গর্ত তৈরির সম্ভাবনা বেড়ে যায়৩ গর্ভাবস্থায় বমির প্রতিক্রিয়া মর্নিং সিকনেস বা গর্ভাবস্থায় বমির সমস্যা হলে বমিতে থাকা এসিড দাঁতের ক্ষতি করতে পারে এর প্রভাবে আপনার দাঁত ও মাড়িতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে গবেষণায় গর্ভকালীন সময়ে মায়েদের দাঁতের মাড়ির রোগের সাথে গর্ভের শিশুর অকাল প্রসব ও কম ওজন নিয়ে জন্ম নেওয়ার যোগসূত্র পাওয়া গিয়েছে তবে মায়ের দাঁত ও মাড়ির রোগ গর্ভের সন্তানকে কীভাবে প্রভাবিত করে সেই বিষয়ে এখনো সুনির্দিষ্ট উত্তর পাওয়া যায়নিএ ছাড়া প্রিএক্লাম্পসিয়া নামক গর্ভকালীন মারাত্মক জটিলতার সম্ভাবনা বেড়ে যাওয়ার সাথেও গর্ভবতীর মাড়ির রোগের সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে তবে এই বিষয়েও গবেষণার পরিমাণ অপর্যাপ্ত সবমিলিয়ে আপনার মাড়ি অথবা দাঁতের রোগ হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয়উল্লেখ্য মাড়ির রোগের চিকিৎসা নেওয়া গর্ভাবস্থার উপর কোনো নেতিবাচক প্রভাবের সাথে জড়িত নয় বরং গর্ভাবস্থায় মাড়ির রোগের চিকিৎসা নেওয়া আপনার মুখের সুস্বাস্থ্যকে সাহায্য করেযেসব মায়েরা দাঁত পড়া ও দাঁতের ক্যাভিটি বা গর্ত বেড়ে যাওয়ার পরেও সঠিক চিকিৎসা করায় না তাদের শিশুদের ছোটোবেলায় দাঁতে ক্যাভিটি হওয়ার সম্ভাবনা তিনগুণের বেশি বেড়ে যায় মাড়ির প্রদাহ কমানোর জন্য ডেন্টিস্ট আপনাকে মুখে খাওয়ার অ্যান্টিবায়োটিক অথবা মাউথওয়াশ দিতে পারেন এসব অ্যান্টিবায়োটিক ও মাউথওয়াশ সাধারণত গর্ভবতী নারীদের জন্য নিরাপদ হয়ে থাকে তবে অবশ্যই আপনার সন্তানসম্ভবা হওয়ার বিষয়টি ডাক্তারকে জানাবেন যেন তিনি আপনার জন্য সবচেয়ে নিরাপদ ও কার্যকর ঔষধটি বেছে নিতে পারেনএসব চিকিৎসার পাশাপাশি তিনি দাঁত ও মাড়ি খুব ভালোমতো পরিষ্কার করার জন্য দাঁতের স্কেলিং করানোর পরামর্শ দিতে পারেন গবেষণায় দেখা গিয়েছে এই প্রক্রিয়া গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ আপনার ডেন্টিস্টের কাছ থেকে দাঁত ও মাড়ির যত্ন নেওয়ার উপায় জেনে নিন নিচে ঘরোয়াভাবে দাঁত ও মাড়ির যত্ন নিয়ে দাঁত ও মাড়ির অসুখ প্রতিরোধের উপায়গুলো তুলে ধরা হয়েছে খাবারের ছোটো ছোটো টুকরা দাঁতের ফাঁকে জমে থেকে অপরিচ্ছন্নতা তৈরি করে যার প্রভাব আপনার দাঁত ও মাড়ির স্বাস্থ্যের ওপর পড়তে পারে তা ছাড়া গর্ভাবস্থায় অথবা এর আগেও আপনার দাঁত অথবা মাড়ির কোনো সমস্যা থাকতে পারে গর্ভধারণের ফলে এসব সমস্যা আরও বেড়ে যেতে পারে এসবের নেতিবাচক প্রভাব থেকে বাঁচার জন্য আপনি কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করতে পারেন যেমন—১ প্রতিদিন দাঁত মাজুন দিনে দুই বার দুই মিনিট করে দাঁত মাজবেন টুথপেস্টের ক্ষেত্রে চেষ্টা করবেন ফ্লোরাইডযুক্ত টুথপেস্ট বেছে নিতে ফ্লোরাইড দাঁতের ক্ষয় প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে ব্রাশ করার সময়ে দাঁতের সামনে ও পেছনে ভালোমতো ব্রাশ করবেন সেই সাথে জিহ্বা ব্রাশ করতে ভুলবেন না জিহ্বা পরিষ্কার করতে Tongue Scraper ব্যবহার করতে পারেন প্রয়োজনে কিভাবে ব্রাশ করলে জমে থাকা ময়লা দূর করা যায় তা আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিন২ দাঁতের মাঝে আটকে থাকা খাবার পরিষ্কার করুন দিনে অন্তত একবার ফ্লস ব্যবহার করে আপনার দাঁতের মাঝে জমে থাকা ছোটো ছোটো খাবারের টুকরা পরিষ্কার করে ফেলুন এতে করে দাঁতে ময়লা জমে প্ল্যাক বা পরত তৈরি হওয়া প্রতিরোধ করা যেতে পারে৩ নরম ব্রাশ ব্যবহার করুন দাঁত ব্রাশ করার জন্য সবচেয়ে ভালো হয় যদি ব্রাশের মাজার অংশটি ছোটো ও নরম বা সফট হয় এজন্য ব্রাশ কেনার সময়ে Soft লেখা আছে কি না দেখে নিতে পারেন ব্রাশটি ধরতে আরামদায়ক কি না সেদিকেও লক্ষ রাখুন৪ অ্যালকোহলমুক্ত মাউথওয়াশ ব্যবহার করুন মুখের পরিচ্ছন্নতায় মাউথওয়াশ একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারে তবে খেয়াল রাখবেন গর্ভাবস্থায় যে মাউথওয়াশটি ব্যবহার করছেন তাতে যেন কোনো অ্যালকোহল না থাকে৫ লবণপানি দিয়ে কুলি করুন দিনে একবার লবণপানি দিয়ে কুলি করে নিলে তা আপনার মাড়ির প্রদাহ কমাতে সাহায্য করতে পারে এজন্য এক কাপ কুসুম গরম পানিতে এক চা চামচ লবণ দিয়ে মিশ্রণ তৈরি করে সেটি ব্যবহার করতে পারেন মুখ থেকে পানি ফেলে দেওয়ার আগে কয়েকবার ভালোমতো গড়গড়া করে নিন৬ চিনিযুক্ত খাবার ও পানীয় কমিয়ে দিন খাবারের সময়ের মাঝে ক্ষুধা দূর করার জন্য স্বাস্থ্যকর খাবার বেছে নিন যেমন সবজি ফল অথবা টক দই সেই সাথে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুন গর্ভাবস্থায় সাধারণত দৈনিক ২–৩ লিটার বা ৮–১২ গ্লাস পানি খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এতে যথেষ্ট পরিমাণে লালা তৈরি হয়ে মুখকে পরিষ্কার রাখতে সহায়তা করবেঅস্বাস্থ্যকর চিনিযুক্ত খাবার ও অ্যাসিডিক খাবার এড়িয়ে চলুন যেমন চিনি দেওয়া চাকফি ও কোমল পানীয় গর্ভকালে চিনিযুক্ত খাবারের প্রতি প্রায়ই দুর্বলতা কাজ করতে পারে তবে খেয়াল রাখতে হবে খুব ঘন ঘন যাতে এসব খাবার খাওয়া না হয় কেননা অতিরিক্ত চিনিযুক্ত খাবার খেলে দাঁত ক্ষয় হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়৭ ধূমপান থেকে বিরত থাকুন গর্ভাবস্থায় সাধারণভাবেই ধূমপান থেকে বিরত থাকা উচিত কেননা ধূমপান গর্ভের শিশুর মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এ ছাড়া ধূমপান আপনার মাড়ির রোগের জন্য আরও খারাপ হতে পারে এমনকি মুখ ও মাড়ির ক্যান্সার ঘটাতে পারে৮ বমির পরে পানি দিয়ে কুলি করুন অনেক মায়ের গর্ভকালে বমি হয় বমির সাথে পেটের অ্যাসিডও মুখে চলে আসে—যা কিনা আপনার দাঁতের ক্ষতি করতে পারে তাই প্রতিবার বমি হওয়ার সাথে সাথে পানি দিয়ে ভালো করে কুলি করে নিন এ ছাড়া বমি করার পর পরই দাঁত ব্রাশ না করে অন্তত এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন কেননা বমির পর পর দাঁত একটু দুর্বল থাকে সাথে সাথে ব্রাশ করলে দাঁতের ক্ষতি হতে পারেসাধারণ পানির পরিবর্তে পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলি করলে সেটা মুখে চলে আসা অ্যাসিডকে নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করতে পারে ঘরেই এই মিশ্রণ তৈরির সহজ উপায় হলো এক কাপ পানিতে এক চামচ বেকিং সোডা গুলিয়ে এই পানি দিয়ে ভালোভাবে কুলি করে নেওয়া এতে দাঁতের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে উপকার পেতে পারেনমুখের যত্ন নিয়ে আরও জানতে ভিডিওটি দেখতে পারেন—৯ অন্তত একবার দাঁতের চেকআপ করান গর্ভাবস্থায় সময়ে দাঁতের ডাক্তার দেখানো আপনার জন্য একটি অপ্রীতিকর অভিজ্ঞতা হবে বলে মনে হতে পারে মুখের ভেতর যন্ত্রপাতি ঢুকালে তা সন্তানকে কিভাবে প্রভাবিত করে—এ নিয়ে আপনার মনে সংশয় থাকতে পারে অথবা এমনও হতে পারে যে এসময়ে বমি বমি ভাব থাকার কারণে দাঁতের ডাক্তার দেখাতে আপনি অস্বস্তি বোধ করছেনএরকম সব জড়তা কাটিয়ে গর্ভকালে অন্তত একবার হলেও দাঁতের ডাক্তার দেখিয়ে নিন তিনি আপনার দাঁত ও মুখ ভালোভাবে পরিষ্কার করে দিবেন যা আপনার মুখের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে সাহায্য করবে ঘরে কিভাবে আপনি মুখের যত্ন নিবেন তাও ডাক্তারের কাছ থেকেই জেনে নিতে পারবেনবেশিরভাগ ডেন্টাল প্রসিডিওর এই সময়ে নিরাপদ বলে বিবেচিত তারপরও আপনি আপনার ডাক্তারকে অবশ্যই জানিয়ে নিবেন যে আপনি সন্তানসম্ভবা এতে করে তিনি আপনার জন্য সবচেয়ে উপযোগী পদ্ধতিটি বেছে নিতে পারবেনদাঁতে ব্যথা হলে যদি ঘরোয়া পরামর্শগুলো মেনে চলার পরেও ব্যথা না কমে তাহলে প্যারাসিটামল খেতে পারেন এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদতবে আপনার জন্য উপযুক্ত ডোজ সম্পর্কে নিশ্চিত না হলে কিংবা ঔষধের বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন গর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের ঔষধ সেবনের আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উত্তম এরপরেও ব্যথা না কমলে দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নিন তিনি গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ একটি উপযুক্ত ব্যথা কমানোর ঔষধ দিতে পারেনকখন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন নিয়মিত ডেন্টিস্টের কাছে চেকআপ করানো আপনার দাঁত ও মাড়ির সুরক্ষায় আপনাকে অনেক সাহায্য করবে সাধারণ অবস্থায় বছরে অন্তত দুইবার দাঁতের ডাক্তারের কাছে গিয়ে দাঁত ও মাড়ি পরীক্ষা করিয়ে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় গর্ভাবস্থায় আপনার যদি বিগত ছয় মাসের ভেতরে দাঁতের ডাক্তার দেখানো না হয়ে থাকে তাহলে দ্রুত দাঁতের ডাক্তার দেখিয়ে নিন এ ছাড়াও নিচের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে একজন দাঁতের ডাক্তারের পরামর্শ নিন—দাঁতে ব্যথা হলেমাড়ির কোনো রোগের লক্ষণ থাকলে যেমন—ঘন ঘন মাড়ি ফোলা অথবা মাড়ি থেকে ঘন ঘন রক্ত পমাড়িতে ব্যথা কিংবা মাড়ি ধরলে বা চাপ দিলে ব্যথা হওয়ামাড়ি ক্ষয় হয়ে যাওমুখে লাগাতার দুর্গন্ধ থাকাদাঁত নড়বড়ে হয়ে যাওমুখে কোনো ধরনের ফোলা বা বাড়তি মাংস দেখা গেলেমুখের ভেতরটা অনুভূতিহীন লাগলে গর্ভকালীন সময়ে আপনার কোনো খাবারের প্রতি হঠাৎ করেই অরুচি শুরু হতে পারে অরুচির কারণে আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকা থেকে কোনো পুষ্টিকর খাবার বাদও পড়ে যেতে পারে এমন সমস্যায় প্রায় অনেক গর্ভবতী মায়েরাই ভোগেনগর্ভকালীন সময়ে আপনার কোনো খাবারের প্রতি হঠাৎ করেই অরুচি শুরু হতে পারে অরুচির কারণে আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকা থেকে কোনো পুষ্টিকর খাবার বাদও পড়ে যেতে পারে এমন সমস্যায় প্রায় অনেক গর্ভবতী মায়েরাই ভোগেনতবে সবারই এমন সমস্যা হয় না এ ধরনের সমস্যায় ভুগলে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই এক্ষেত্রে একটু সচেতনতার সাথে খাবার তালিকা বাছাই করতে হবে তাহলেই আপনার খাবার তালিকায় পুষ্টি উপাদানের ঘাটতি হবে না ফলে আপনি অপুষ্টিসহ অন্যান্য কিছু সমস্যা সহজেই এড়িয়ে চলতে পারবেন গর্ভাবস্থায় সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো সময় থেকে কোনো খাবারের প্রতি অরুচি শুরু হয় না একেকজনের ক্ষেত্রে একেকসময়ে ও একেক খাবারের প্রতি এই লক্ষণ দেখা দেয় আবার কারও কারও এধরনের কোনো লক্ষণই প্রকাশ পায় না গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়ার প্রতি অরুচি তৈরি হয় তার নির্দিষ্ট কোনো তালিকা নেই ভিন্ন ভিন্ন নারীর ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে এমন লক্ষণ দেখা দেয়যেহেতু অরুচির কোনো নির্দিষ্ট ধরন নেই সেহেতু আপনার যেকোনো খাবারের প্রতিই অরুচি সৃষ্টি হতে পারে তবে সাধারণত মাছ মাংস পেঁয়াজ ও ডিমের প্রতি অরুচি বেশি দেখা যায় কারও কারও ক্ষেত্রে কিছুটা কড়া গন্ধযুক্ত যেকোনো খাবারে বেশি অরুচি হয়ে থাকেপুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারে অরুচি হলে অনেকেরই অপুষ্টিতে ভোগার সম্ভাবনা থাকে তাই কোনো নির্দিষ্ট পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবারে অরুচি হলে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নেওয়া ভালো এতে করে ডাক্তার আপনাকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদানসমৃদ্ধ ঔষধ অথবা বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো খাবার খাওয়ার পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করতে পারেন গর্ভাবস্থায় যদি অপুষ্টিকর খাবারে (যেমন ভাজাপোড়া) অরুচি হয় তাহলে এসব খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকুন তবে গর্ভাবস্থায় পুষ্টিকর ও স্বাস্থ্যকর খাবারে অরুচি হলে আপনার প্রতিদিনের খাবার তালিকা তৈরির সময়ে একটু সতর্ক থাকতে হবে যাতে অরুচির কারণে কোনো প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সমৃদ্ধ খাবার খাওয়া বাদ না যায়এক্ষেত্রে যেসব পরামর্শ মেনে চলতে পারেন—১ প্রতিদিন প্রয়োজনীয় পুষ্টিমানের খাবার খানযেসব খাবারে অরুচি হয় তার পরিবর্তে বিকল্প পুষ্টিকর খাবার খেতে পারেন যেমন আপনার মাছ খেতে অরুচি হলে এর পরিবর্তে মাংস ডিম ও দুধ একটু বেশি করে খানকোনো নির্দিষ্ট ধরনের পুষ্টিগুণের সব খাবারের প্রতি অরুচি হলেও চেষ্টা করুন অল্প অল্প করে কয়েকবারে খাওয়ার প্রয়োজনে রান্নার পদ্ধতি বদল করে নিজের পছন্দমতো উপায়ে রান্না করে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুনতবে অপুষ্টি প্রতিরোধে অরুচি হলেও কোনো পুষ্টিকর খাবারকে তালিকা থেকে একেবারেই বাদ দিয়ে দেবেন নাপড়ুন গর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা২ হালকা ও গন্ধহীন খাবার খানগন্ধযুক্ত খাবারে অরুচি হলে তার পরিবর্তে সাময়িকভাবে গন্ধহীন হালকা ও শুকনা খাবার খেতে পারেন যেমন মুড়ি চিড়া অথবা বিস্কুট তবে এসব খাবারে সব পুষ্টি উপাদান থাকে না তাই এসব খাবার খাওয়ার পাশাপাশি অন্যান্য পুষ্টি উপাদানের খাবারগুলোও অল্প অল্প কয়েকবারে খাওয়ার চেষ্টা করবেনএ ছাড়াও অনেক সময়ে কোনো খাবারের গন্ধেও বমি বমি ভাব হতে পারে ফলে সেই খাবার খেতে অনীহা তৈরি হয় আপনার এমন সমস্যা থাকলে লেবু অথবা অন্য কোনো টক ফল দিয়ে খাবার খেতে পারেন ধারণা করা হয় যে গর্ভকালীন সময়ে যেসব টক ফল খেলে বমি বমি ভাব হওয়ার সম্ভাবনা একটু কমে যায় ৩ ডাক্তারের পরামর্শ নিনঅরুচির সমস্যা বেড়ে গেলে এবং সাধারণ পরামর্শে কাজ না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডাক্তার আপনাকে নির্দিষ্ট কিছু পুষ্টি উপাদানের জন্য ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন এতে আপনার অপুষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রোধ করা যাবে গর্ভাবস্থায় অরুচি হওয়ার জন্য দায়ী নির্দিষ্ট কোনো কারণ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি তবে ধারণা করা হয় যে গর্ভাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তনের কারণে রুচির এমন পরিবর্তন ঘটে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হতে পারে যোনিপথে রক্তপাত সবসময়ই কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ না হলেও এটি কখনো কখনো মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতার লক্ষণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তপাত হতে পারে যোনিপথে রক্তপাত সবসময়ই কোনো গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ না হলেও এটি কখনো কখনো মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতার লক্ষণ হতে পারেঅল্প কিংবা বেশি—যেই পরিমাণ রক্তপাতই হোক না কেন দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যান স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা ডাক্তারের চেম্বারের দূরত্ব বেশি হলেও যোনিপথে রক্তপাত হওয়ার সাথে সাথে ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা করুন এসময়ে সবচেয়ে আরামদায়ক যানবাহনটি বেছে নিতে চেষ্টা করবেন এসময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ কারণ কখনো কখনো এমন কিছু কারণে যোনিপথে রক্তপাত হয় যা আপনার ও গর্ভের শিশুর জীবন বিপন্ন করতে পারে ডাক্তার আপনার সাথে কথা বলে এবং শারীরিক পরীক্ষা করে যোনিপথে রক্তপাতের কারণ খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন এসময়ে তিনি মাসিকের রাস্তা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন প্রয়োজনে আলট্রাসনোগ্রাফিসহ কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন এগুলো রক্তপাতের কারণ খুঁজে বের করে প্রয়োজনে দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নিশ্চিত করতে সাহায্য করবে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে যোনিপথে রক্তপাত হওয়া বেশ কমন প্রতি ৪ জন গর্ভবতীর মধ্যে ১ জনের এসময়ে যোনিপথে রক্তপাত হয় অনেক ক্ষেত্রেই এটা গুরুতর সমস্যার কারণ নয়এসময়ে সাধারণত হালকা রক্তপাত হয়ে থাকে তবে কিছু ক্ষেত্রে ভারী রক্তপাতও হতে পারে—যা অধিক শঙ্কার কারণ গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসে যাদের যোনিপথ দিয়ে ভারী রক্তপাত হয় তাদের গর্ভপাত হওয়ার ঝুঁকি সাধারণের তুলনায় তিনগুণ বেশি গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে যোনিপথে রক্তপাতের কিছু কারণ—১ ইমপ্ল্যান্টেশন জনিত রক্তপাতমায়ের পেটে ভ্রূণ বড় হতে হতে পূর্ণাঙ্গ শিশুতে রূপ নেয় এই ভ্রূণ যখন গর্ভাবস্থার শুরুতে জরায়ুতে প্রথমবারের মতো নিজের জায়গা করে নেয় সেই প্রক্রিয়াকে বলা হয় ইমপ্ল্যান্টেশন ইমপ্ল্যান্টেশনের সময়ে যোনিপথে হালকা বা ছোপ ছোপ রক্তপাত হতে পারেযে সময়টায় আপনার মাসিক হওয়ার কথা সাধারণত তার কাছাকাছি সময়ে এমন হালকা রক্তপাত হতে দেখা যায় ফলে এটাকে অনেকে ভুলে মাসিকের রক্তপাত মনে করতে পারেন এক্ষেত্রে নিশ্চিত হওয়ার উপায় হলো প্রেগন্যান্সি টেস্ট করাউল্লেখ্য সবার ক্ষেত্রেই ইমপ্ল্যান্টেশনের সময়ে রক্তপাত হয় না এসময়ে রক্তপাত হওয়া কিংবা না হওয়া—দুটোই সাধারণত আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ২ গর্ভপাত বা মিসক্যারেজগর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভের শিশুর মৃত্যু হলে সেটিকে গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ বলে[৪] গর্ভপাত বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের মধ্যে ঘটে দুঃখজনকভাবে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এসব গর্ভপাত প্রতিরোধ করা যায় না গর্ভপাতের অন্যতম লক্ষণ হলো যোনিপথে রক্তপাত হওয়াযোনিপথে রক্তপাতের পাশাপাশি গর্ভপাতের অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে রয়েছে—তলপেটে ব্যথা ও কামড়ানো বা খিঁচ ধরাযোনিপথ দিয়ে স্রাব জাতীয় তরল বের হওয়াযোনিপথ দিয়ে টিস্যু বা মাংসের মতো দলা অংশ বের হয়ে আগর্ভবতী হওয়ার লক্ষণগুলো (যেমন বমি বমি ভাব ও স্তনে ব্যথা) আর অনুভব না করা গর্ভপাতের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তার দেখান গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসের মতো পরবর্তী মাসগুলোতেও জরায়ুমুখের পরিবর্তন যোনিপথের ইনফেকশন ও অন্যান্য কারণে যোনিপথে রক্তপাত হতে পারে তবে পরবর্তী মাসগুলোতে যোনিপথে রক্তপাত হওয়ার পেছনে মারাত্মক কোনো কারণ থাকতে পারে তাই রক্তক্ষরণ হলে অবহেলা না করে দ্রুত ডাক্তারের কাছে যান এই সময়ে যোনিপথে রক্তপাতের কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—১ প্ল্যাসেন্টা বা গর্ভফুল ছিঁড়ে যাওয়া এটি একটি মারাত্মক সমস্যা যাকে ডাক্তারি ভাষায় প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশন বলা হয় প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল গর্ভের শিশুকে মায়ের দেহ থেকে প্রয়োজনীয় পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে পাশাপাশি শিশুর দেহ থেকে বর্জ্য পদার্থ বের করে দিতেও সাহায্য করেকারও কারও ক্ষেত্রে প্লাসেন্টা গর্ভধারণের ২০তম সপ্তাহের পরে জরায়ুর দেয়াল থেকে ছিঁড়ে আলাদা হয়ে যেতে পারে এক্ষেত্রে সাধারণত একটানা তীব্র পেট ব্যথা হয় সাথে যোনিপথে ভারী রক্তপাত হয়উল্লেখ্য প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশনে কখনো কখনো যোনিপথে রক্তপাত নাও হতে পারে তবে অভ্যন্তরীণ রক্তক্ষরণ হতে থাকার কারণে মা ও শিশু উভয়ের জীবনই হুমকির মুখে পড়তে পারে তাই এমন কোনো লক্ষণ থাকলে দেরি না করে হাসপাতালে যাওয়া খুবই জরুরি গর্ভাবস্থায় যোনিপথে রক্তপাতের কারণ নির্ণয় করার জন্য ডাক্তার আপনার রক্তপাত নিয়ে কিছু প্রশ্ন করবেন তিনি আপনার পেলভিক পরীক্ষা বা তলপেট ও মাসিকের রাস্তা পরীক্ষা করতে পারেন এভাবে তিনি কতটুকু রক্ত যাচ্ছে কিংবা রক্তের উৎস কোথায় সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করবেন গর্ভাবস্থার ২০ সপ্তাহের পরে যোনিপথে রক্তপাত হচ্ছে এমন গর্ভবতীকে সাধারণত সরাসরি পেলভিক পরীক্ষা করা উচিত নয় পেলভিক পরীক্ষা করার আগে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে গর্ভবতীর প্লাসেন্টা প্রিভিয়া না থাকার বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নেওয়া প্রয়োজনযোনিপথে রক্তপাতের কারণ নির্ণয়ে ডাক্তার কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন যেমন তলপেট অথবা মাসিকের রাস্তা দিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম পরীক্ষা এবং রক্ত পরীক্ষাহাসপাতালে যাওয়ার আগে ডাক্তারের সম্ভাব্য কিছু প্রশ্নের উত্তর গুছিয়ে রাখুন যেমন—আপনার শেষ মাসিকের তারিখ কবে ছিলআপনার গর্ভধারণের কত সপ্তাহ অথবা মাস চলছেএর আগে আপনি গর্ভধারণ করেছেন কি না করে থাকলে সেটায় কোনো সমস্যা বা জটিলতা ছিল কি নাদ্বিতীয় অথবা তৃতীয় ত্রৈমাসিক চললে আপনি বাচ্চার নড়াচড়া টের পান কি নারক্তপাতের সাথে ব্যথা আছে কি নাতলপেটে কোনোরকম আঘাত পেয়েছেন কি নাঅন্যান্য কোনো সমস্যা (যেমন মাথা ঘুরানো কিংবা কাঁধে ব্যথা) আছে কি না গর্ভাবস্থায় আপনার যোনিপথে যেই পরিমাণ রক্তপাতই হোক না কেন দেরি না করে ডাক্তারের কাছে যাবেনযোনিপথে অতিরিক্ত রক্তপাত হলে কিংবা এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি ও প্লাসেন্টাল অ্যাবরাপশনের মতো জটিলতা থাকলে হাসপাতালের জরুরি বিভাগ অথবা গাইনি ইমারজেন্সিতে আপনার চিকিৎসা করা হবে সেক্ষেত্রে আপনার ও পরিবারের লোকজনের কাছ থেকে তথ্য নিয়ে এবং আপনার শারীরিক অবস্থা দেখে সেই অনুসারে দ্রুত সঠিক চিকিৎসাটি বেছে নেওয়া হবেগুরুতর রক্তপাতের ক্ষেত্রে আপনার শরীরে রক্ত প্রদানের প্রয়োজন হতে পারে তাই আপনার রক্তের গ্রুপের সাথে মিলে যায় এমন কেউ আশেপাশে থাকলে তাকে রক্তদানের জন্য প্রস্তুত থাকতে অনুরোধ করতে পারেনরক্তপাতের কারণ গুরুতর হলে হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নেওয়াই ভালো কেননা এতে ডাক্তার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর্মী আপনাকে নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করতে পারবেন এ ছাড়া হঠাৎ করে যদি জরুরি চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তাহলে তারা হয়তো তুলনামূলকভাবে দ্রুত আপনার উপযুক্ত চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে পারবেনআপনার লক্ষণগুলো যদি গুরুতর না হয় এবং বাচ্চা হওয়ার সময় এখনো অনেক দূরে থাকে তাহলে আপনাকে শুধুমাত্র পর্যবেক্ষণে রাখা হতে পারে এজন্য ডাক্তার আপনাকে বাড়িতে পাঠিয়ে ১–২ সপ্তাহ পর আবার দেখা করতে বলতে পারেন এসময়ের মধ্যে অনেকের যোনিপথে রক্তপাত বন্ধ হয়ে যায়তবে প্রয়োজন মনে করলে ডাক্তার আপনাকে হাসপাতালে ভর্তি করে পর্যবেক্ষণে থাকার পরামর্শ দিতে পারেন হাসপাতালে কতদিন থাকতে হবে সেটা রক্তপাতের কারণ এবং আপনি কত সপ্তাহের গর্ভবতী—এমন কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করবেগর্ভবতীর রক্তের গ্রুপ যদি নেগেটিভ গ্রুপ হয় তাহলে যোনিপথে রক্তপাত হলে অ্যান্টি ডি নামের এক ধরনের বিশেষ ইনজেকশন দেওয়ার প্রয়োজন হতে পারে গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ নারীরই ঘুমের সমস্যা দেখা যায় এর মধ্যে রয়েছে রাতে ঘুম না আসা বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া অথবা সঠিক সময়ে ঘুম আসলেও অনেক তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে জেগে ওঠা গবেষণায় দেখা গিয়েছে গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুম না হওয়ার সাথে মা ও শিশুর নানান স্বাস্থ্য জটিলতার সম্পর্ক থাকতে পারে গর্ভাবস্থায় বেশিরভাগ নারীরই ঘুমের সমস্যা দেখা যায় এর মধ্যে রয়েছে রাতে ঘুম না আসা বারবার ঘুম ভেঙে যাওয়া অথবা সঠিক সময়ে ঘুম আসলেও অনেক তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে জেগে ওঠা গবেষণায় দেখা গিয়েছে গর্ভকালীন সময়ে ভালো ঘুম না হওয়ার সাথে মা ও শিশুর নানান স্বাস্থ্য জটিলতার সম্পর্ক থাকতে পারে এ ছাড়াও ঘুমের সমস্যা থেকে দিনের বেলায় বেশি ক্লান্ত লাগতে পারে এবং কাজে মনোযোগ ধরে রাখতে অসুবিধা হতে পারে কিছু সহজ কৌশল অনুসরণ করলে আপনি গর্ভকালীন সময়ে ঘুমের সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে বিভিন্ন হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে এসবের পাশাপাশি শারীরিক মানসিক ও আচরণগত নানান পরিবর্তন আসে এই পরিবর্তনগুলোর সাথে তাল মেলাতে গিয়ে অনেকসময় ঘুমের সমস্যা হতে পারেগর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে আপনার পেটের আকারও বাড়তে থাকে পেট বড় হয়ে যাওয়ার কারণে আরামদায়ক অবস্থানে ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে এটিও কখনো কখনো অনিদ্রার কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে গর্ভকাল যত বাড়ে ঘুমের সমস্যাও তত বাড়তে পারে বিশেষ করে গর্ভাবস্থার একেবারে শেষের সপ্তাহগুলোতে পেটের আকারের জন্য আরাম করে ঘুমানো বেশ কঠিন হয়ে উঠতে পারে তবে এই বিষয়ে বেশি দুশ্চিন্তা না করে যতটুকু সম্ভব বিশ্রাম নিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করতে হবেওপরের কারণগুলোর পাশাপাশি সাধারণ সময়ের কিছু কমন উপসর্গের কারণেও গর্ভাবস্থায় ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে যেমন—ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়াবুক জ্বালাপোড়াবমি বমি ভাবপিঠ ব্যথাগর্ভের শিশুর নড়াচড়াপা কামড়ানোঅতিরিক্ত চিন্তা ও স্ট্রেসদুঃস্বপ্নশ্বাসকষ্টরেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম অথবা অস্থিরতা থেকে ঘন ঘন পা নাড়ানো সাধারণত ৭–৯ ঘণ্টার ঘুমকেই আদর্শ বলে ধরা হয় এর চেয়ে কম ঘুম হলে সেটি আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে পর্যাপ্ত ঘুম না হলে দিনে ক্লান্তি ও বেখেয়ালি বোধ হতে পারে ফলে দৈনন্দিন কাজ করতে সমস্যা তৈরি হতে পারেঘুমের সমস্যা হলে প্রসবের সময়ে সিজারিয়ান অপারেশনের প্রয়োজন বেড়ে যেতে পারে এ ছাড়া অনিদ্রার সাথে সঠিক সময়ের আগে প্রসব হয়ে যাওয়ার মতো প্রসব সংক্রান্ত জটিলতা প্রিএক্লাম্পসিয়া ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক রয়েছে[৮][৯]এসবের পাশাপাশি জন্মের পর ১ মাস বয়সে শিশুর ঘুম ও বেশি কান্নাকাটি করার সাথেও মায়ের অনিদ্রার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছে তাই অন্যান্য সময়ের মতো গর্ভাবস্থায়ও মায়ের পর্যাপ্ত ঘুম নিশ্চিত করা গুরুত্বপূর্ণ ঘুম ঠিকমতো না হওয়া নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করলে সেটি ঘুমাতে আরও বেশি সমস্যা তৈরি করতে পারে এজন্য এটি নিয়ে দুশ্চিন্তা না করে নিচের সহজ ও কার্যকর পরামর্শগুলো মেনে চলতে পারেন এগুলো আপনার ঘুমের সমস্যা সমাধানে সাহায্য করতে পারে১ ঘুমানোর পরিবেশঘুমানোর জন্য শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বেছে নিন যেই রুমে ঘুমাবেন সেটি অন্ধকার ও আরামদায়ক রাখার চেষ্টা করুন অতিরিক্ত গরম ঠান্ডা অথবা উজ্জ্বল আলোতে ভালোমতো ঘুমাতে অসুবিধা হতে পারে ঘুমানোর সময়ে ঘরে যাতে কোনো ধরনের আলো না আসে এজন্য জানালায় ভারী পর্দা ব্যবহার করতে পারেন এ ছাড়াও প্রয়োজন হলে ঘুমানোর সময় চোখে আই মাস্ক ও কানে ইয়ার প্লাগ ব্যবহার করতে পারেন আই মাস্কের পরিবর্তে চোখের ওপর ছোটো কোনো কাপড় রেখেও ঘুমাতে পারেনঘুমানো অথবা বিশ্রাম নেওয়া ছাড়া বিছানায় অন্য কিছু করা পরিহার করুন বিছানা শুধুমাত্র ঘুমানোর জন্যই ব্যবহার করুন বিছানায় টিভি দেখা ফোন চালানো অথবা পড়ার অভ্যাস থাকলে সেটি বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন এসব কাজ টেবিলচেয়ার অথবা সোফায় বসে করুন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত বিছানার কাছে না যাওয়ার চেষ্টা করুনঘুমানোর আগে টিভিমোবাইল দেখা পরিহার করুন ঘুমাতে যাওয়ার আগে স্মার্টফোন ট্যাবলেট টিভি অথবা কম্পিউটার—এ ধরনের ইলেক্ট্রনিক যন্ত্রপাতির ব্যবহার বন্ধ রাখুন এগুলোর উজ্জ্বল আলো ঘুম আসতে বাধা দিতে পারে চেষ্টা করুন আপনার ঘুমানোর রুমে টিভি অথবা কম্পিউটার না রাখতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ফোন বিছানা থেকে দূরে রেখে এরপর ঘুমাতে যেতে পারেন২ ঘুমানোর নিয়মআরামদায়ক অবস্থানে ঘুমান গর্ভাবস্থায় ঘুমের অবস্থান নিয়ে কখনো কখনো আপনার সমস্যা হতে পারে এসময়ে পেট বড় হয়ে যাওয়ার কারণে উপুড় হয়ে ঘুমানো যায় না আবার চিৎ হয়ে ঘুমালে নানান ক্ষতি হতে পারেবিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের পর থেকে চিৎ হয়ে শোয়ার ফলে জরায়ুতে রক্ত প্রবাহে বাধা সৃষ্টি হতে পারে ফলে আপনার মাথা ঘুরাতে পারে—এমনকি শিশুর শরীরে রক্ত প্রবাহ কমে গিয়ে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে এজন্য এসময়ে একপাশ হয়ে অর্থাৎ ডান অথবা বাম দিকে কাত হয়ে ঘুমালে সেটি সবচেয়ে ভালো ঘুমের সময় একটি অথবা দুটো হাঁটুই ভাঁজ করে রাখতে পারেন পেটকে সাপোর্ট দিতে কাত হয়ে শোয়ার পরে পেটের নিচে একটা বালিশ আর দুই হাঁটুর মাঝে আরেকটা বালিশ ব্যবহার করতে পারেন সুবিধা মনে হলে লম্বা কোলবালিশও ব্যবহার করতে পারেন এ ছাড়াও ঘুমানোর জন্য আপনার জন্য আরামদায়ক বালিশ তোষক ও কাঁথাকম্বল ব্যবহার করবেন অস্বস্তিকর বালিশ ব্যবহার করলে ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারেতবে ঘুমের অবস্থান নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না আপনার শরীর হয়তো ঘুমের মধ্যে আপনাআপনি সবচেয়ে ভালো অবস্থানটি বেছে নিতে পারবেনিয়ম করে ঘুমানোর অভ্যাস করুন প্রতিদিন ঘুমানোর জন্য একটি রুটিন বানাতে পারেন এই রুটিন অনুযায়ী একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন এই অভ্যাস ঘুমকে নিয়মিত করতে সাহায্য করবেতবে কোনো কারণে এক রাতে রুটিন অনু্যায়ী ঘুম না হলে অথবা কম ঘুম হলে পরদিন দুপুরে কিংবা অন্য সময়ে বেশি করে ঘুমিয়ে সেটা পূরণের চেষ্টা করবেন না এতে করে আপনার নিয়মিত ঘুমের রুটিনটি নষ্ট হয়ে যেতে পারে বরং একদিন একটু কম ঘুম হলেও পরের দিন আবার রুটিনমতো একই সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করুনদিনে ঘুমানো কমিয়ে দিন দিনে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে সেটি বাদ দেওয়ার চেষ্টা করুন কেননা এতে রাতে ঠিকমতো ঘুম আসতে সমস্যা হতে পারে তবে এমন যদি হয় যে রাতে ঘুমে অনেক সমস্যা হচ্ছে এবং দিনে না ঘুমালে প্রচুর ক্লান্ত লাগছে তাহলে ক্লান্তি কাটানোর জন্য দুপুরের আগে অল্প কিছুক্ষণের জন্য ঘুমিয়ে নিতে পারেনঘুম না আসলে অথবা মাঝরাতে ভেঙে গেলে উঠে হালকা কাজ করুন ২০–৩০ মিনিট শুয়ে থাকার পরেও ঘুম না আসলে বিছানা থেকে উঠে যান কিছুক্ষণের জন্য কোনো ছোটোখাটো কাজ করতে পারেন যেমন ঘর গোছানো অথবা শেলফ এর বই গোছানো এতে একসময় ক্লান্তি আসলে তা ঘুমাতে সাহায্য করতে পারে তবে ফোন অথবা কম্পিউটার চালাবেন না এতে ঘুমের সমস্যা আরও বাড়তে পারেসময় হিসাব করে ঘুমাবেন না সারাদিনের মোট কতক্ষণ ঘুমাচ্ছেন ঘুম ঠিক পরিমাণে হচ্ছে কি না—এসব নিয়ে বেশি চিন্তা করবেন না এগুলো নিয়ে মাথায় দুশ্চিন্তা থাকলে ঘুম আসতে আরও সমস্যা হতে পারেঘুমানোর আগে উষ্ণ পানিতে গোসল করুন রাতে ঘুমানোর ঘন্টাখানেক আগে উষ্ণ বা কুসুম গরম পানিতে গোসল করে নিতে পারেন এটি আপনাকে রিল্যাক্স করিয়ে ঘুম আসতে সাহায্য করতে পারে তবে খুব গরম অর্থাৎ ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের বেশি তাপমাত্রার পানিতে গোসল না করাই শ্রেয় ৩ ব্যায়ামগর্ভাবস্থায় আপনার পছন্দের ব্যায়াম করা চালিয়ে যান যেমন হাঁটা দৌড়ানো সাইকেল চালানো ও সাঁতার কাটা আগে থেকে ব্যায়াম করার অভ্যাস না থাকলে হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে পারেন নিয়মিত ব্যায়াম করলে (বিশেষ করে হাঁটলে অথবা সাঁতার কাটলে) তা গর্ভাবস্থার রাতে ভালো ঘুমে সাহায্য করে তবে ঘুমানোর ঠিক আগের চার থেকে ছয় ঘন্টার মধ্যে ব্যায়াম না করাই ভালো এর আগে প্রতিদিন ৩০ মিনিট ব্যায়াম করে নিতে পারেন ৪ মানসিক চাপ কমানোমেডিটেশন করার চেষ্টা করুন মানসিক প্রশান্তির জন্য যোগব্যায়াম বা মেডিটেশন করতে পারেন এ ধরনের ব্যায়াম স্ট্রেস কমানোর পাশাপাশি ঘুমে সাহায্য করতে পারে দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেনপড়ুন দুশ্চিন্তা কমানোর ব্যায়ামমনের কথা কাছের মানুষকে জানান যদি কোনো চিন্তার কারণে ঘুমে সমস্যা হচ্ছে বলে মনে হয় তাহলে সেই চিন্তা দূর করার ব্যবস্থা করুন কাছের মানুষদের আপনার সমস্যার কথা জানাতে পারেন সঙ্গী বন্ধু অথবা পরিবারের অন্য কাউকে আপনার সমস্যা জানালে মন হালকা হতে পারে এটি ঘুমের সমস্যা কমাতেও সাহায্য করতে পারেযদি এমন হয় যে তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে ইচ্ছা করছে কিন্তু কথা বলার জন্য কাউকে পাচ্ছেন না তাহলে ডায়েরি লেখার চেষ্টা করতে পারেন এ ছাড়া মনের কথা ও মাথায় থাকা চিন্তাগুলো ফোনে ভয়েস রেকর্ড করে অথবা নোট করে রাখতে পারেন অনেক সময় চিন্তা দূর করতে পারলে ঠিকমতো ঘুমানো বেশ সহজ হয়ে আসেঘুমানোর আগে বই পড়তে পারেন ঘুমানোর আগে হালকা কোনো বই পড়তে পারেন এ ছাড়া ছোটোখাটো হাতের সেলাইয়ের কাজ কিংবা পছন্দের ছোটোখাটো যেকোনো কাজ বেছে নিতে পারেন তবে গর্ভাবস্থা সংক্রান্ত বই রহস্য অথবা থ্রিলারের বই এসময়ে এড়িয়ে গেলেই ভালো গর্ভকালীন সময়ে ঘুমের সমস্যা হলে প্রথমে ঘরোয়া চিকিৎসা বেছে নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় এতে কাজ না হলে কগনিটিভ বিহেভিওরাল থেরাপি নামের একটি পদ্ধতির মাধ্যমে কাউন্সেলিং করে অনিদ্রার চিকিৎসা করা হতে পারে এর মাধ্যমে সাধারণত ঘুম না আসার কারণগুলো চিহ্নিত করে সেগুলো প্রতিরোধ করার উপায় নিয়ে কাউন্সেলিং করানো হয় মানসিক রোগ গাইনি অথবা মেডিসিন বিশেষজ্ঞ আপনাকে প্রশিক্ষিত কাউন্সেলরের কাছে রেফার করতে পারেনএসবে কাজ না হলে ডাক্তার আপনাকে নির্দিষ্ট ঘুমের ওষুধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন উল্লেখ্য গর্ভাবস্থায় ঘুমের ওষুধ খাওয়াকে সাধারণত নিরুৎসাহিত করা হয় গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় প্রচলিত ঘুমের ওষুধ সেবনের ফলে সময়ের আগে সন্তান প্রসব হওয়া জন্মের সময়ে শিশুর ওজন কম হওয়া ও আকারে ছোটো হওয়ার মতো জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যেতে পারে[২১]এ ছাড়া গর্ভধারণের শেষের দিকে ও প্রসবকালীন সময়ে উচ্চ ডোজে ঘুমের ওষুধ খেলে নবজাতকের শ্বাসকষ্টসহ নানান মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা হতে পারে তাই কখনোই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া নিজে নিজে কোনো ঘুমের ওষুধ খাওয়ার চেষ্টা করবেন না বরং অনিদ্রার সমাধানে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ঘুম না হওয়ার পেছনে শারীরিক অথবা মানসিক কোনো কারণ থাকলে ডাক্তার উপযুক্ত পরামর্শ দিতে পারবেন তিনি প্রয়োজনে আপনার অবস্থা বিবেচনা করে সবচেয়ে নিরাপদ ঔষধটি বেছে নিতে সাহায্য করতে পারবেনগুরুত্বপূর্ণঅনেকসময় ডিপ্রেশন বা তীব্র হতাশার কারণেও ঘুমের সমস্যা হতে পারে পাশাপাশি স্লিপ অ্যাপনিয়া নামক রোগে ঘুমের সময়ে শ্বাসপ্রশ্বাস বন্ধ হয়ে আসার কারণেও ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারে এসব কারণে রাতে ঠিকমতো ঘুম না হলে মানসিক বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে যেতে হবে নতুবা সময়ের সাথে সমস্যাগুলো মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে গর্ভাবস্থার প্রথমদিকের লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো স্তনের পরিবর্তন শিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত তার যাবতীয় পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকে পায় এজন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার দেহ স্তনকে প্রস্তুত করতে থাকে ফলে পুরো গর্ভাবস্থা জুড়ে আপনার স্তনে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হতে থাকেগর্ভাবস্থার প্রথমদিকের লক্ষণগুলোর মধ্যে একটি হলো স্তনের পরিবর্তন শিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত তার যাবতীয় পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকে পায় এজন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার দেহ স্তনকে প্রস্তুত করতে থাকে ফলে পুরো গর্ভাবস্থা জুড়ে আপনার স্তনে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হতে থাকেগর্ভাবস্থায় স্তনে অনেকগুলো পরিবর্তন দেখা যেতে পারে তবে সবার ক্ষেত্রেই একই সময়ে এসব পরিবর্তন হবে—বিষয়টি এমন নয় তাই এসব পরিবর্তন নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না স্তনে সচরাচর যেসব পরিবর্তন দেখা যায় সেগুলো নিচে তুলে ধরা হয়েছে গর্ভাবস্থার শুরুর দিকের অন্যতম লক্ষণ হলো স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগা গর্ভকালীন হরমোনের ওঠানামা আর স্তনের ভেতরের বাড়ন্ত নালীর কারণে এমন হয় গর্ভাবস্থার চতুর্থ সপ্তাহ থেকেই এমন লক্ষণ দেখা দিতে পারে তবে অনেকের ক্ষেত্রে মাসিক শুরু হওয়ার কয়েকদিন আগেও স্তনে ব্যথা হতে পারে[২] একারণে স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগলেও সেটা অনেকে গর্ভধারণের লক্ষণ হিসেবে খেয়াল নাও করতে পারেগর্ভাবস্থায় স্তনের ব্যথা একেকজনের কাছে একেকরকম মনে হতে পারে যেমন—স্তন ভারী অথবা চাপ চাপ লাগা স্তনে টনটনে ব্যথা বা শিরশির করার মতো অনুভূতি হওয়া পুরো স্তন জুড়ে ভোঁতা এক ধরনের ব্যথা হতে থাকা তীক্ষ্ণ ব্যথা হওয়াব্যথার তীব্রতাও মানুষভেদে কমবেশি হতে পারে এসময়ে আপনার স্তন হাত দিয়ে স্পর্শ করলে হালকা ব্যথা লাগতে পারে আবার অনেকের ক্ষেত্রে ব্রা পরলেই তীব্র ব্যথা শুরু হতে পারে প্রথম ত্রৈমাসিকে স্তনে হালকা অথবা তীব্র ব্যথা হওয়া—দুটোই স্বাভাবিকগর্ভাবস্থায় স্তনের এই স্পর্শকাতরতা বা ব্যথার কারণে অনেক দম্পতি এসময়ে সহবাস এড়িয়ে চলেন তবে স্তনে ব্যথার ধরন ও তীব্রতা যদি আপনার জন্য অস্বস্তির কারণ না হয় তাহলে গর্ভাবস্থায় সহবাস চালিয়ে যেতে কোনো বাধা নেইস্তনের ব্যথা ও চাপ চাপ লাগার অনুভূতি আপনার স্বাভাবিক জীবনযাত্রাকে ব্যাহত না করলে এই ব্যথা নিয়ে তেমন দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই ব্যথা কমাতে স্তনকে ভালো সাপোর্ট দেয় এমন সঠিক মাপের ব্রা পড়ুনপ্রয়োজনে প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন এটি একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন এ ছাড়া কোনো কারণে ব্যথার ধরন আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হলে অথবা এই বিষয়ে দুশ্চিন্তা হলে ডাক্তার দেখিয়ে নিন গর্ভাবস্থায় সময়ের সাথে সাথে স্তনের বোঁটা আকারে বড় হতে থাকে পাশাপাশি রঙও গাঢ় হয় এ ছাড়া স্তনের ব্যথাও বিশেষত স্তনের বোঁটাতেই অনুভূত হয় গর্ভকালীন হরমোনের প্রভাবে শরীরের অন্যান্য স্থানের মতো স্তনের বোঁটাতেও রক্ত চলাচল বেড়ে যায় একারণে স্তনের বোঁটায় খোঁচা খোঁচা কিংবা শিরশিরে অনুভূতি হতে পারেস্তনের বোঁটার আশেপাশের গাঢ় রঙের জায়গাকে অ্যারিওলা বলে গর্ভাবস্থায় অ্যারিওলাতে আপনি ছোটো ছোটো দানা বা বিচির মতো লক্ষ করতে পারেন[৪] এমন দানা বা বিচি দেখা দিলে ঘাবড়ানোর কিছু নেই এগুলো মূলত স্তনের বোঁটার চারপাশের এক ধরনের গ্রন্থির ফুলে ওঠা অংশএই গ্রন্থি তেল জাতীয় পদার্থ নিঃসরণ করে স্তনের বোঁটাকে শুষ্কতা থেকে বাঁচায় এবং সুস্থ রাখে৷ তাই এই ধরনের দানা বা বিচি দেখা দিলে তা গলিয়ে ফেলা বা চাপাচাপি করা থেকে বিরত থাকুন গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে অথবা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের শুরুতে আপনি আপনার স্তনের আকারে পরিবর্তন লক্ষ করবেন শিশুর জন্মের পরে তার পুষ্টির চাহিদা পূরণের প্রস্তুতি হিসেবে আপনার স্তনে এসময়ে ফ্যাট বা চর্বি জমা হতে থাকে পাশাপাশি স্তনের ভেতরে থাকা দুধ তৈরির নালিকাগুলো প্রশস্ত হতে থাকে সব মিলিয়ে গর্ভাবস্থায় স্তনের আকার স্বাভাবিকের চেয়ে বেড়ে যায়[৫][৬]স্তনের আকার বাড়ার সাথে সাথে ব্রা এর কাপ সাইজও সাধারণত বেড়ে যায় গর্ভাবস্থার তৃতীয় মাসে আপনার ব্রা এর মাপ পুরো এক কাপ সাইজ পর্যন্ত বেড়ে যেতে পারে[৭]ব্রা এর কাপ সাইজ কীভাবে মাপবেন ব্রা এর যেই অংশ স্তনকে ঢেকে রাখে সেটি হলো ব্রা এর কাপ আপনার জন্য সঠিক কাপ সাইজ হিসাব করতে প্রথমে স্তনের নিচের অংশ ইঞ্চি ফিতা দিয়ে মেপে নিন এটিকে আন্ডার বাস্ট বলে এরপর স্তনের সবচেয়ে বড় বা স্ফীত অংশ বরাবর ফিতা বসিয়ে আবার মাপুন এটিকে বাস্ট বলে ছবি বামে আন্ডারবাস্ট ও ডানে বাস্ট সাইজ মাপার পদ্ধতি এবার বাস্ট এর মাপ থেকে আন্ডার বাস্ট এর মাপ বিয়োগ করে এদের মধ্যে পার্থক্য বের করুন পার্থক্য কাপ সাইজ ১ ইঞ্চি এ ২ ইঞ্চি বি ৩ ইঞ্চি সি ৪ ইঞ্চি ডি সম্ভব হলে অবশ্যই কেনার আগে দোকানে ট্রায়াল দিয়ে ব্রা ঠিকমতো ফিট হয় কি না সেটি দেখে নিতে পারেন গর্ভাবস্থায় পরার উপযোগী নার্সিং ব্রা অথবা হুক ছাড়া আরামদায়ক সুতির ব্রা এসময়ে বেশি আরামদায়ক হতে পারে সম্ভব হলে ঘুমানোর সময়ে বিশেষ স্লিপিং ব্রা ব্যবহার করুন এ ছাড়া ব্যায়াম করার সময়ে ভালো সাপোর্টযুক্ত স্পোর্টস ব্রা ব্যবহার করবেন এগুলো বাড়ন্ত স্তনকে সাপোর্ট দেওয়ার পাশাপাশি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে গর্ভাবস্থায় সঠিক সাইজের ব্রা ব্যবহার না করলে অস্বস্তি হতে পারে তাই এসময়ে আপনার স্তনের আকার অনুযায়ী সঠিক সাইজের পোশাক ও ব্রা বেছে নিন গর্ভাবস্থায় হরমোনের তারতম্যের কারণে স্তন ও স্তনের বোঁটাসহ শরীরের বিভিন্ন জায়গায় চুলকানি হতে পারে৷ তা ছাড়া গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাধারণত স্তনের আকার বাড়তে থাকায় স্তনের ত্বক কিছুটা টানটান হয় এতে ত্বক শুষ্ক হয়ে পড়তে পারে এবং স্তন ও স্তনের বোঁটায় চুলকানি হতে পারেত্বক টানটান হওয়ার কারণে স্তনের বোঁটা ও এর আশেপাশের চামড়ায় স্ট্রেচ মার্ক বা ফাটা দাগও দেখা দিতে পারে আবার কারও কারও একজিমার মতো চর্মরোগের কারণে স্তনের বোঁটা ও এর চারিদিকে চুলকানি হতে পারেস্তনের বোঁটা কিংবা তার চারিদিকে চুলকানি সাধারণত দুশ্চিন্তার বিষয় নয় কিছু ঘরোয়া পরামর্শ মেনে আপনি এই চুলকানি নিয়ন্ত্রণ করতে পারেন—আপনার স্তনে অথবা স্তনের বোঁটায় চুলকানি হলেও চেষ্টা করবেন সেই জায়গা না চুলকাতে৷ নখের আঁচড় থেকে ত্বকে আঘাত লাগার কারণে সেখানে ইনফেকশন হতে পারে পাশাপাশি ত্বকের আঘাত থেকে জ্বালাপোড়া হয়ে চুলকানি আরও বেড়ে যেতে পারে এসময়ে ঢিলেঢালা পোশাক ও সঠিক মাপের সুতির ব্রা ব্যবহার করলে আরাম পেতে পারেন চুলকানি বেশি হলে কয়েক টুকরো বরফ একটু মোটা সুতি কাপড়ে জড়িয়ে স্তনে ও বোঁটায় লাগাতে পারেন উষ্ণ বা কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করলেও চুলকানি ভাব কমে আসতে পারে তবে বেশি গরম পানি দিয়ে গোসল করা থেকে বিরত থাকবেন কেননা সেটি ত্বকের আর্দ্রতা কমিয়ে ত্বককে শুষ্ক করে ফেলতে পারে স্তনের চামড়া শুষ্ক হয়ে যাওয়া প্রতিরোধে ভালো কোনো লোশন ময়েশ্চারাইজার গ্লিসারিন অথবা অলিভ অয়েল লাগাতে পারেনউল্লেখ্য যদি কোনো কারণে চুলকানির ধরন আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয় কিংবা চুলকানির কারণে স্বাভাবিক কাজকর্ম ও ঘুম ব্যাহত হয় তাহলে একজন ডাক্তার দেখিয়ে নিবেন তিনি আপনার সমস্যা অনুযায়ী ক্রিম মলম অথবা গর্ভাবস্থায় নিরাপদ এমন মুখে খাওয়ার ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে স্তনের বোঁটা থেকে দুধের মতো হলুদাভসাদা বা সোনালী রঙের আঠালো তরল নিঃসৃত হতে পারে এই তরল হলো কোলোস্ট্রাম বা শালদুধ শিশু জন্মের পর প্রথম দুধ হিসেবে এই শালদুধ পান করে এটি শিশুকে তার প্রয়োজনীয় নানান গুরুত্বপূর্ণ পুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে শালদুধে অনেক অ্যান্টিবডি থাকে যা নবজাতক শিশুকে নানান রোগজীবাণু থেকে রক্ষা করে[৮]গর্ভাবস্থায় শালদুধ নিঃসৃত হওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা এ নিয়ে চিন্তার কিছু নেই এটি শিশুর জন্মের জন্য আপনার শরীরের প্রস্তুতির একটি সংকেত মাত্র তবে শালদুধ নিঃসরণে যদি আপনার অস্বস্তি হয় কিংবা গায়ের কাপড় ভিজে যায় তাহলে টিস্যু পেপার অথবা ব্রেস্ট প্যাড (এই নামেই দোকানে কিনতে পাওয়া যায়) ব্যবহার করতে পারেনএসময়ে স্তন শুষ্ক ও পরিচ্ছন্ন রাখা গুরুত্বপূর্ণ কারণ স্তন যদি সবসময় ভেজা থাকে তবে সেখানে ছত্রাক জনিত ক্ষত বা ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা দিতে পারে৷শালদুধ কোনো কারণে রক্তমিশ্রিত থাকলে সেটির রঙ গোলাপি বা লালচে দেখাতে পারে এমন কিছু লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন এটি গুরুতর কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে গর্ভাবস্থায় আপনার স্তনসহ সারা দেহে রক্ত সরবরাহ বাড়েএসময়ে শরীরে নানান হরমোনের মাত্রাও বাড়ে এসবের প্রভাবে স্তনের শিরাগুলো আকারে বড় হয় ও দৃশ্যমান হয়ে ওঠে এগুলো তখন স্তনের গায়ে বেগুনী বা নীলচে রেখার মতো দেখা দেয় শিশুর জন্মের পর এই রেখাগুলো নিজে থেকেই মিলিয়ে যায় তাই এর জন্য সাধারণত কোনো চিকিৎসার প্রয়োজন পড়ে না গর্ভাবস্থায় কারও কারও স্তনে চাকা বা পিণ্ডের মত দেখা দিতে পারে[১১] এ নিয়ে ঘাবড়ানোর তেমন কিছু নেই গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিক থেকে সাধারণত স্তনে দুধ উৎপাদন শুরু হয় অনেকসময় দুধ জমে গিয়ে স্তনের গায়ে এমন ফুলে ওঠা অংশ বা পিণ্ড দেখা দেয় তবে এমন কোনো পিণ্ড যদি আপনার কাছে অস্বাভাবিক মনে হয় সেক্ষেত্রে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে গিয়ে স্তন পরীক্ষা করিয়ে নিবেনকখন ডাক্তারের কাছে যাবেন স্তনে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে যেমন— স্তনে অথবা বগলে শক্ত চাকা বা দলার ন্যায় অনুভব করা স্তনের কোনো অংশ ফুলে যাওয়া স্তনে অস্বাভাবিক ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হওয়া স্তনের বোঁটা থেকে রক্ত পুঁজ কিংবা কোনো অস্বাভাবিক তরল নিঃসৃত হওয়া স্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া স্তনের চামড়ায় চুলকানি হওয়া অথবা তা লালচে হয়ে যাওয়া স্তনের চামড়ায় টোল বা গর্তের মতো হওয়া স্তনের আকারআকৃতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করা এসব লক্ষণের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হয়তো স্বাভাবিক তবে এগুলো স্তনের বিশেষ কোনো রোগ এমনকি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে[১২] তাই সঠিক সময়ে রোগ নির্ণয় করে সঠিক চিকিৎসা শুরু করতে ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়াই শ্রেয়[১৩] শিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত তার যাবতীয় প্রয়োজনীয় পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকেই পেয়ে থাকে আর এজন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার শরীরে চলতে থাকে প্রস্তুতি এই প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো স্তনের পরিবর্তন যেমন স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠাশিশু জন্মের পর প্রথম ৬ মাস পর্যন্ত তার যাবতীয় প্রয়োজনীয় পুষ্টি মায়ের বুকের দুধ থেকেই পেয়ে থাকে আর এজন্য গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার শরীরে চলতে থাকে প্রস্তুতি এই প্রস্তুতির একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো স্তনের পরিবর্তন যেমন স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠাগর্ভাবস্থায় স্তনের বোঁটার চারপাশের শিরা বা রক্তনালীগুলো অনেকসময় খুব স্পষ্ট হয়ে ওঠে স্তনের গায়ে এগুলো বেগুনী বা নীলচে রেখার মত দেখায় এটি গর্ভাবস্থার একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন এতে আতংকিত বা দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হওয়ার কোনো কারণ নেইস্তনের দৃশ্যমান শিরা সাধারণত গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের মধ্যেই স্তনের শিরা দৃশ্যমান হয়ে উঠতে শুরু করেতবে সবার ক্ষেত্রেই যে এমন পরিবর্তন দেখা দিবে তা নয় তা ছাড়া একেকজনের ক্ষেত্রে স্তনের এই পরিবর্তন একেকরকম হতে পারে ত্বক ফর্সা হলে শিরাগুলো বেশি স্পষ্টভাবে ফুটে উঠতে পারে আবার ত্বকের বর্ণ গাঢ় হলে আপনি হয়তো শিরাগুলো খেয়ালও করবেন না তাই এটি নিয়ে ঘাবড়ে যাবেন নাসাধারণত গর্ভাবস্থা থেকে শুরু হয়ে সন্তান জন্মদানের পরে কিছু সময় পর্যন্ত স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান থাকতে পারে আবার অনেকের ক্ষেত্রে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর পুরো সময়টা জুড়েও এটি থাকতে পারে তবে এর পরে দৃশ্যমান শিরাগুলো সাধারণত নিজে থেকেই চলে যায়গর্ভাবস্থায় আপনার স্তনে আরও কিছু সাধারণ পরিবর্তন দেখা দিতে পারেযেমন—স্তনে ব্যথা বা চাপ চাপ লাগা স্তনের আকার আগের চেয়ে বড় হওয়া স্তনের বোঁটা ও এর চারপাশের ত্বকের রঙ গাঢ় হয়ে যাওয়া স্তনের বোঁটা থেকে হলুদাভ দুধের মতো তরল বেরিয়ে আসা গর্ভাবস্থার প্রথমদিক থেকেই গর্ভবতী নারীর শরীরে রক্ত সরবরাহের পরিমাণ বাড়তে থাকে সেই সাথে শিরাগুলোও প্রসারিত হয় এই প্রসারণে গর্ভকালীন হরমোনের ভূমিকা রয়েছেএই বাড়তি রক্তের চাপ আর হরমোনের তারতম্যের কারণে রক্তনালীর ওপরে চাপ সৃষ্টি হয় ফলে শিরাগুলো কিছুটা ফুলে উঠতে শুরু করেএভাবেই ফুলে ওঠা শিরাগুলোকে স্তনের গায়ে বেগুনী বা নীলচে রেখা হিসেবে দেখা যায় তবে কখনো কখনো স্তনের শিরাগুলো এভাবে দৃশ্যমান হয়ে ওঠার পেছনে আরও কিছু কারণ কাজ করতে পারে যেমন—পারিবারিক ইতিহাস পরিবারের অন্যদের (যেমন মা বোন খালা অথবা নানী) গর্ভবতী অবস্থায় এমনটা হয়ে থাকলে আপনার গর্ভকালীন সময়েও এমনটা হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে স্তনের আকার স্তনের আকার বড় হলে গর্ভাবস্থায় দৃশ্যমান শিরা দেখা যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে এ ছাড়া স্তন বড় করার অপারেশন করিয়েছেন এমন ৯৭ জন নারীর ওপরে করা গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে স্তন বড় করার পরে বেশিরভাগ নারীর স্তনের শিরাগুলো অধিক দৃশ্যমান হয়ে উঠেছে মন্ডরস ডিজিজ এটি একটি বিরল রোগএই রোগে বুক বা স্তনের চামড়ার নিচে থাকা শিরাগুলোতে প্রদাহ বা জ্বালাপোড়া হয় ফলে স্তনের গায়ের শিরাগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই স্তনের দৃশ্যমান শিরাগুলো শিশুর জন্মের পরে নিজে নিজেই মিলিয়ে যায় তাই আলাদা করে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়ে না এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় সঠিক মাপ অনুযায়ী আরামদায়ক ও ভালো সাপোর্টযুক্ত ব্রা ব্যবহার করলে এই সমস্যা উপশম হতে পারেকখন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন যদি শিশুর জন্মের অনেকদিন পরেও স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান থেকে যায় অথবা এই সমস্যার কারণে অনেক অস্বস্তি হতে থাকে তাহলে একজন ডার্মাটোলোজিস্ট বা চর্মরোগ বিশেষজ্ঞকে দেখিয়ে নিতে পারেন তিনি আপনার স্তন পরীক্ষা করে দেখার পাশাপাশি কিছু পরীক্ষানিরিক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন এ ছাড়া স্তনে অস্বাভাবিক কোনো পরিবর্তন লক্ষ করলে দ্রুত ডাক্তার দেখাতে হবে যেমন— স্তনে অথবা বগলে চাকা বা দলার ন্যায় অনুভব করা স্তনের কোনো অংশ ফুলে যাওয়া স্তনে অস্বাভাবিক ব্যথা কিংবা জ্বালাপোড়া হওয়া স্তনের বোঁটা থেকে রক্ত পুঁজ কিংবা কোনো অস্বাভাবিক তরল নিঃসৃত হওয়া স্তনের বোঁটা ভেতরের দিকে ঢুকে যাওয়া স্তনের চামড়ায় চুলকানি হওয়া অথবা তা লালচে হয়ে যাওয়া স্তনের চামড়ায় টোল বা গর্তের মতো হওয়া স্তনের আকারআকৃতিতে অস্বাভাবিক পরিবর্তন লক্ষ করা এসব লক্ষণের মধ্যে কিছু পরিবর্তন হয়তো স্বাভাবিক তবে এগুলো স্তনের বিশেষ কোনো রোগ এমনকি স্তন ক্যান্সারের লক্ষণও হতে পারে[৮] তাই ডাক্তার দেখিয়ে নেওয়াই শ্রেয় স্তনের শিরাগুলো দৃশ্যমান হয়ে ওঠা গর্ভাবস্থার একটি স্বাভাবিক পরিবর্তন এটি প্রতিরোধ করার তেমন কোনো উপায় নেই তা ছাড়া গর্ভাবস্থায় শিরা ফুলে ওঠা আসলে কোনো রোগ বা সমস্যা নয় বরং এটি অনাগত শিশুর পুষ্টি সরবরাহের জন্য আপনার শরীরের প্রস্তুতি মাত্রতাই এই সমস্যা নিয়ে বিচলিত না হয়ে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করাই শ্রেয় কারণ নির্দিষ্ট সময়টুকুর পরে এটি সাধারণত নিজে নিজেই ঠিক হয়ে যায়৷ বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারেএটি সাধারণত দুশ্চিন্তার বিষয় নয় গর্ভাবস্থায় সুস্থ জীবনধারা এবং কিছু ঘরোয়া সমাধান অনুসরণ করলে এসব সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায়বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের সমস্যা দেখা দিতে পারেএটি সাধারণত দুশ্চিন্তার বিষয় নয় গর্ভাবস্থায় সুস্থ জীবনধারা এবং কিছু ঘরোয়া সমাধান অনুসরণ করলে এসব সমস্যা অনেকটাই নিয়ন্ত্রণ করা যায় গর্ভাবস্থায় বুক জ্বালাপোড়ার মতো হজমের সমস্যা হলে সাধারণত নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়—বুকের মাঝখানে জ্বালাপোড়া অথবা ব্যথা হওয়া মুখে টক স্বাদ আসা পেট ফাঁপা অথবা ভরা ভরা লাগা বমি বমি লাগা ও বমি গলা জ্বলা ও গলায় খাবার উঠে আসাসাধারণত খাবার খাওয়া অথবা পানীয় পান করার পর পরই কিংবা খাওয়ার অল্প কিছুক্ষণের মধ্যে শুয়ে পড়লে অ্যাসিডিটির লক্ষণগুলো দেখা যায় তবে কখনো কখনো খাবার খাওয়ার বেশ কিছুক্ষণ পরেও বুক জ্বালাপোড়া শুরু হতে পারে বুক জ্বালাপোড়ার অনুভূতি কয়েক মিনিট থেকে কয়েক ঘন্টা পর্যন্ত থাকতে পারে বুক জ্বালাপোড়া অথবা বদহজমের সমস্যা গর্ভাবস্থার যেকোনো সময়েই শুরু হতে পারে তবে সাধারণত গর্ভকাল বাড়ার সাথে সাথে অ্যাসিডিটির সমস্যা বাড়তে থাকে বিশেষ করে গর্ভধারণের ২৭তম সপ্তাহের পর থেকে গর্ভবতী নারীদের এই সমস্যায় বেশি ভুগতে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় শরীরে বিশেষ কিছু হরমোন (যেমন প্রোজেস্টেরন) তুলনামূলক বেশি পরিমাণে তৈরি হয় এ হরমোনগুলোর প্রভাবে পাকস্থলী থেকে এসিড গলায় উঠে আসতে পারে এমন হলে বুক জ্বালাপোড়ার অনুভূতি হয় হরমোনগুলোর প্রভাবে খাবার হজম হতেও বেশি সময় লাগে এ কারণে হজমের সমস্যাও হতে পারেআপনি জানেন কি শুনতে অদ্ভুত লাগলেও একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় যেসব নারীরা বেশি বুক জ্বালাপোড়া অনুভব করেছেন তাদের গর্ভের শিশুর তুলনামূলকভাবে বেশি চুল নিয়ে জন্মেছে এখান থেকে ধারণা করা হয় গর্ভাবস্থায় যেসব হরমোনের জন্য বুক জ্বালাপোড়া বেড়ে যায় সেসব হরমোন গর্ভের শিশুর চুল বড় হওয়ার পেছনে ভূমিকা রাখতে পারে তবে এই বিষয়ে এখনো কোনো নিশ্চিত প্রমাণ পাওয়া যায়নি[২]এ ছাড়া গর্ভে বাড়ন্ত শিশুর জন্য পাকস্থলীতে চাপ লাগার কারণে এসিড ওপরে উঠে আসে বলে ধারণা করা হয়[৩] এটি বুক জ্বালাপোড়া বাড়িয়ে দিতে পারে সেই সাথে বাড়ন্ত শিশু পরিপাক নালীর ওপরে চাপ বাড়িয়ে হজমের গতি কমিয়ে দিতে পারে[৪][৫]এসব কারণের পাশাপাশি সাধারণ অবস্থায় যেসব কারণে বুক জ্বালাপোড়া হয়ে থাকে সেসব কারণেও গর্ভবতী নারীদের বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে যেমন—প্রয়োজনের তুলনায় অতিরিক্ত খাবার খেলে ঝাল অথবা তৈলাক্ত খাবার খেলে টকজাতীয় খাবার খেলে যেমন টমেটো চকলেট খেলে এবং কফি পান করলে অতিরিক্ত ওজন হলে[৬] মানসিক চাপ বা স্ট্রেসে থাকলে গর্ভাবস্থার আগে থেকেই বদহজমের সমস্যা থাকলে কোনো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলে পূর্বের কোনো গর্ভকালীন সময়ে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা থাকলেবিশেষ দ্রষ্টব্য আপনার যদি মনে হয় যে ডাক্তারের পরামর্শ মেনে নিয়মিত কোনো ঔষধ খাওয়ার কারণে আপনার বুক জ্বালাপোড়া হচ্ছে তাহলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন ডাক্তার সেটির বিকল্প হিসেবে অন্য কোনো ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন তবে কখনোই নিজে নিজে কোনো ঔষধ পরিবর্তন করার অথবা বাদ দেওয়ার চেষ্টা করবেন না জীবনধারা ও খাবারদাবারে কিছু পরিবর্তন আনলে বুক জ্বালাপোড়ার উপসর্গ অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা যেতে পারে এজন্য—১ অল্প অল্প করে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করুনগর্ভাবস্থায় কখনো কখনো কোনো খাবার একবারে অনেক বেশি পরিমাণে খেতে ইচ্ছা করতে পারে কিন্তু ভরপেট খেলে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা বেশি হতে পারে এজন্য দৈনিক তিনবেলা খাওয়ার পরিবর্তে সারাদিনের খাবারগুলোকে ভাগ করে অল্প অল্প করে ছয় বেলা খেতে পারেনএতে করে কিছুক্ষণ পর পর খাওয়ার ইচ্ছাও পূরণ হয় পাশাপাশি অতিরিক্ত খাবার খাওয়ার প্রবণতাও রোধ করা যায়খাবারের পাশাপাশি পানি খাওয়ার ক্ষেত্রেও এই নিয়ম মনে রাখার চেষ্টা করবেন খাবার খাওয়ার সময়ে পানি বেশি খেলে পেট বেশি ভরে উঠতে পারে তাই খাওয়ার মাঝে পানি খাওয়ার পরিবর্তে খাবার খাওয়ার কিছুক্ষণ আগে অথবা পরে পানি খাবেনএকজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে[৭] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন২ সবসময় সোজা হয়ে বসে ধীরে ধীরে খাবার খাবেনখাবার ভালো করে চিবিয়ে খাওয়া হলে পাকস্থলীতে খাবার হজম প্রক্রিয়া কিছুটা সহজ হতে পারে এ ছাড়াও দ্রুত খাবার খেলে কিংবা খাওয়ার সময়ে কথা বললে খাবারের সাথে বাতাস মুখে ঢুকে যায় এতে পেটে বেশি গ্যাস তৈরি হয়ে পেট ফাঁপা লাগতে পারে এজন্য সময় নিয়ে মনোযোগ সহকারে খাবার ধীরে চিবিয়ে খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে করে বদহজম ও অ্যাসিডিটির সমস্যা কিছুটা কমতে পারেপাশাপাশি খাওয়ার সময়ে সোজা হয়ে বসে খাবেন এতে পাকস্থলীর ওপর থেকে চাপ কমবে এটি বদহজম প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে৩ ঘুমানোর ঠিক আগে খাবার খাবেন নারাতে ঘুমাতে যাওয়ার অন্তত তিন ঘন্টা আগে রাতের খাবার খেয়ে ফেলার চেষ্টা করুন[৮] এ ছাড়াও দিনের বেলা খাওয়ার পরও তিন ঘন্টার মধ্যে শুয়ে পড়বেন না খাওয়ার পর পরই শুয়ে পড়লে বুক জ্বালাপোড়া বেড়ে যেতে পারে৪ নির্দিষ্ট কিছু খাবার এড়িয়ে চলুনযে ধরনের খাবার খেলে অথবা পানীয় পান করলে আপনার বুক জ্বালাপোড়া বেশি হয় সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুন এমন খাবার হতে পারে কফি চকলেট লেবুজাতীয় ফল টমেটো কোমল পানীয় তৈলাক্ত ঝাল অথবা ঝাঁঝালো খাবার৫ ঘুমানোর সময়ে মাথার অবস্থান ঠিক রাখুনঘুমানোর সময় মাথা ও ঘাড় শরীর থেকে ছয়–আট ইঞ্চি উঁচুতে রেখে ঘুমানোর চেষ্টা করুন এজন্য তোষক অথবা খাটের নিচে শক্ত কোনো কাঠের ব্লক অথবা অন্য কিছু দিয়ে উঁচু করে নিয়ে সেদিকটাতে মাথা ও ঘাড় রেখে ঘুমাতে পারেন এতে পাকস্থলীর এসিড ওপরে ওঠার সম্ভাবনা অনেকটাই কমে যায়[৯]তবে মাথার নিচে বেশি বালিশ দিয়ে ঘুমাবেন না এটি বুক জ্বালাপোড়া কমাতে তেমন সাহায্য করে না[১০]৬ ওজন নিয়ন্ত্রণ করুনস্বাভাবিক ওজনের একজন নারীর ওজন গর্ভাবস্থায় ১১৫ কেজি–১৬ কেজি পর্যন্ত বাড়লে সেটিকে স্বাভাবিক ধরা হয় তাই গর্ভকালীন সময়ে আপনার ওজন যাতে এর চেয়ে বেশি না বাড়ে সেদিকে লক্ষ রাখুন অতিরিক্ত ওজনের কারণে বুক জ্বালাপোড়া হতে পারে[১১]৭ ঢিলেঢালা জামাকাপড় বাছাই করুনগর্ভকালীন সময়ে পরার জন্য ঢিলেঢালা কাপড় বেছে নিন আঁটসাঁট জামা পরলে পেটে চাপ পড়ে বুক জ্বালাপোড়া বেশি অনুভূত হতে পারে৮ চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুনস্ট্রেস বা মানসিক চাপের কারণেও বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যাও তৈরি হতে পারে[১২] এজন্য চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করুন গর্ভাবস্থায় করা যায় এমন কিছু যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে পারেননিঃশ্বাসের ব্যায়াম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন এই ব্যায়ামটি শুয়ে চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারে আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেন ব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন— শুয়ে থাকলে পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন হাতের তালু ওপরের দিকে অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুন চেয়ারে বসে থাকলে দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন দাঁড়িয়ে থাকলে পা দুটো সমান ভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন এবার লম্বা করে শ্বাস নিন খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিন তারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে নিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিতে থাকুন তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন৯ সিগারেট ও মদ বর্জন করুনযদি আপনি মদ অথবা সিগারেটে আসক্ত থাকেন তাহলে এসবের অভ্যাস যত দ্রুত সম্ভব ছেড়ে দেওয়ার চেষ্টা করুন এগুলোর বহু ক্ষতিকর প্রভাবের একটি হচ্ছে বুক জ্বালাপোড়ার সমস্যা সৃষ্টি করা তাছাড়া মদ ও সিগারেট গর্ভের শিশুর মারাত্মক ক্ষতি করে তাই যত দ্রুত সম্ভব এগুলো ছেড়ে দিন১০ চুইং গাম চিবানো এড়িয়ে চলুনচুইং গাম চিবালে পেটে বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে যা থেকে পেট ফাঁপা ও হজমের সমস্যা দেখা দিতে পারে[১৩] তাই চুইং গাম খাওয়া এড়িয়ে চলবেন সাধারণত ঘরোয়া সমাধানগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে বুক জ্বালাপোড়া ও বদহজমের সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে তবে এরপরও লক্ষণগুলো না কমলে ঔষধ খেতে পারেনপ্রথমে অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট জাতীয় ঔষধ সেবন করতে পারেন এই ধরনের ঔষধ সাধারণত বুক জ্বালাপোড়ার লক্ষণ প্রকাশ পাওয়ার পরে সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয় তবে কখনো কখনো ডাক্তার আপনাকে খাওয়ার আগে অথবা ঘুমাতে যাওয়ার আগে এসব ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন যদি অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট সেবনের পরেও লক্ষণের কোনো উন্নতি না হয় তাহলে এগুলোর পরিবর্তে ওমিপ্রাজল খেয়ে দেখতে পারেন[১৪]আপনার যদি আয়রন ট্যাবলেট ও অ্যান্টাসিড—দুটো ঔষধই সেবনের প্রয়োজন হয় তাহলে ঔষধ দুটো আলাদা সময়ে সেবন করবেন একই সময়ে সেবন করলে অ্যান্টাসিড শরীরে আয়রন শোষণ কমিয়ে ফেলতে পারে[১৫] তাই অ্যান্টাসিড খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে অথবা ২ ঘণ্টা পরে আয়রন ট্যাবলেট খাবেনউল্লেখ্য অ্যান্টাসিড অ্যালজিনেট ও ওমিপ্রাজল—এগুলো সবই ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনগর্ভাবস্থায় সাধারণত অ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধ সেবন করা নিরাপদ৷ তবে কিছু অ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধ গর্ভের শিশুর ক্ষতি সাধন করতে পারে গর্ভকালীন সময়ে এইসব নির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টাসিড জাতীয় ঔষধ সেবন করা থেকে বিরত থাকবেন যেমন— বাইকার্বনেটযুক্ত অ্যান্টাসিড গর্ভকালীন সময়ে বাইকার্বনেটযুক্ত অ্যান্টাসিড (যেমন সোডিয়াম বাইকার্বনেট) সেবন করলে কিছু ক্ষেত্রে মা ও শিশুর শরীরে অতিরিক্ত পানি জমতে পারে তাই এগুলো এড়িয়ে চলাই শ্রেয়[১৬] ম্যাগনেশিয়াম ট্রাইসিলিকেটযুক্ত অ্যান্টাসিড গর্ভাবস্থায় দীর্ঘদিন ধরে এবং উচ্চ মাত্রায় ম্যাগনেশিয়াম ট্রাইসিলিকেটযুক্ত অ্যান্টাসিড সেবন করলে গর্ভের শিশুর শ্বাসকষ্ট ও কিডনিতে সমস্যা হতে পারে[১৭]কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিবেন নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে— খাদ্যাভ্যাস ও জীবনধারা পরিবর্তনের পরেও উপকার না হলে খাবার খেতে সমস্যা হলে অথবা খাওয়ার পরে বমি হয়ে গেলে পেট ব্যথা হলে বারবার বমি হলে বমিতে টকটকে লাল রক্ত অথবা কফির দানার মতো কিছু দেখা গেলে পায়খানা কালো হলে খাবার গিলতে সমস্যা অথবা গলায় আটকে যাচ্ছে মনে হলে কোনো চেষ্টা ছাড়াই ওজন কমে গেলে তীব্র বুক জ্বালাপোড়া অথবা বুক ব্যথা হলে বারবার বদহজম হলে বুক জ্বালাপোড়ার সাথে জ্বর অথবা মাথাব্যথা থাকলেপড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা গর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানো খুবই কমন একটি সমস্যা এক্ষেত্রে আপনার মনে হতে পারে যেন চারপাশের সবকিছু দুলতে বা ঘুরতে শুরু করেছে আবার এমনও মনে হতে পারে যে আপনি নিজেই ঘুরছেন কখনো কখনো আপনি হঠাৎ করে ভারসাম্য হারিয়ে পড়েও যেতে পারেনগর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানো খুবই কমন একটি সমস্যা এক্ষেত্রে আপনার মনে হতে পারে যেন চারপাশের সবকিছু দুলতে বা ঘুরতে শুরু করেছে আবার এমনও মনে হতে পারে যে আপনি নিজেই ঘুরছেন কখনো কখনো আপনি হঠাৎ করে ভারসাম্য হারিয়ে পড়েও যেতে পারেনআবার কারও কারও হয়তো মাথা ঝিম ঝিম করতে পারে কিংবা হালকা হালকা লাগতে পারে মনে হতে পারে যেন আপনি এখনই জ্ঞান হারিয়ে ফেলবেনগর্ভাবস্থায় মাথা ঘুরানো অস্বাভাবিক নয় এ ধরনের সমস্যা হলে ভয় না পেয়ে কিছু সাবধানতা মেনে চলতে হবে এভাবে আপনি নিজের ও গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে পারবেন সাধারণত গর্ভধারণের প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষদিকে মাথা ঘুরানোর সমস্যা শুরু হয় এরপর সমগ্র গর্ভকাল জুড়েই এই সমস্যা থাকতে পারে আবার কারও কারও গর্ভধারণের পর থেকেই মাথা ঘুরানোর সমস্যা দেখা দিতে পারে তবে গর্ভাবস্থায় সবারই মাথা ঘুরানোর সমস্যা হবে—বিষয়টি এমন নয় গর্ভাবস্থায় কিছু বিশেষ কারণে মাথা ঘুরানোর সমস্যা দেখা দেয়—হরমোনের প্রভাব এসময়ে আপনার শরীরে বেশ কিছু হরমোন ওঠানামা করে এসব হরমোনের প্রভাবে মাথা ঘুরাতে পারে রক্ত চলাচল বৃদ্ধি গর্ভকালীন প্রথম ত্রৈমাসিকের শেষের দিকে আপনার শরীরে রক্ত চলাচল প্রায় দেড়গুণ বেড়ে যায় একারণে অতিরিক্ত গরম লাগা ও ঘাম হওয়ার পাশাপাশি মাথা ঘুরাতে পারেএসবের পাশাপাশি আরও যেসব কারণে মাথা ঘুরাতে পারে—ব্রেইনে পরিমাণমতো রক্ত সরবরাহ না হওয়ায় ব্রেইনে পর্যাপ্ত পরিমাণ অক্সিজেনের অভাব হলে যেমন— হঠাৎ করে চেয়ারে বসা অথবা বিছানায় শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে দ্রুত দাঁড়িয়ে গেলে এসময়ে ব্রেইনে রক্ত সরবরাহ হুট করে কমে যায় পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকলে চিত হয়ে শোয়ার ফলে গর্ভের শিশুর জন্য রক্তনালীতে চাপ পড়ে ফলে ব্রেইনে রক্ত সরবরাহ কমে যেতে পারে শরীরে পানিশূন্যতা হলে অতিরিক্ত গরমে ক্লান্ত লাগলে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ হঠাৎ কমে গেলে ব্লাড প্রেসার বা রক্তচাপ কমে গেলে রক্তশূন্যতায় ভুগলে কোনো কারণে আতঙ্কিত হলে অথবা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করলে ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলেএ ছাড়াও মাইগ্রেন ও কানের সমস্যাসহ অন্য কোনো রোগ থাকলেও আপনার মাথা ঘুরানোর সমস্যা হতে পারে সহজ কিছু নিয়ম মেনে চলার মাধ্যমে আপনি মাথা ঘুরানোর সমস্যার চিকিৎসা করতে পারবেন তবে কোনো নির্দিষ্ট রোগের কারণে মাথা ঘুরালে এটি পুরোপুরি সারাতে ঐ রোগের সঠিক চিকিৎসা করতে হবেগর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানো প্রতিরোধের জন্য নিচের নিয়মগুলো মেনে চলুন—যা করবেন গর্ভকালীন সময়ে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিবেন বসা অথবা শুয়ে থাকা অবস্থা থেকে ওঠার সময় ধীরে ধীরে উঠে দাঁড়াবেন প্রচুর পরিমাণে পানি পান করবেন একজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে[৪] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন সারাদিনে অল্প অল্প করে বারবার পুষ্টিকর খাবার খাবেন নিয়মিত ব্যায়াম করবেন—এতে শরীর ও ব্রেইনে রক্ত চলাচল ভালো হয়[৫] দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় মাথা ঘুরালে যত দ্রুত সম্ভব ধীরে ধীরে হেঁটে আশেপাশের চেয়ারে অথবা বিছানায় বসে পড়বেন এরপরেও মাথা ঘুরানো না কমলে এক কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা অবস্থায় মাথা ঘুরলে দ্রুত এক কাত হয়ে শুয়ে পড়বেন ঢিলেঢালা জামা পরবেন যাতে পর্যাপ্ত পরিমাণে বাতাস চলাচল করতে পারে খোলামেলা ও বাতাসপূর্ণ ঘরে থাকবেন প্রয়োজনে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে খোলা জায়গায় হাঁটতেও পারেন তবে যদি মনে হয় যে আপনি মাথা ঘুরিয়ে পড়ে যেতে পারেন তাহলে হাঁটাহাঁটি করবেন না অথবা বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করবেন না তখন আশেপাশের কাউকে জানালা খুলে দিতে বলবেন একটানা অনেকক্ষণ ধরে অথবা অতিরিক্ত পরিমাণে ভারী কোনো কাজ বা শারীরিক পরিশ্রম না করে বরং কাজের ফাঁকে ফাঁকে কিছুক্ষণ পা তুলে বসে বিশ্রাম নিবেন সেই সাথে নিয়মিত বিরতিতে পানি পান করবেন[৬] কোনো ঔষধ খাওয়া শুরু করার পর থেকে মাথা ঘুরানোর সমস্যা শুরু হয়েছে মনে হলে পরবর্তী চেকআপে ডাক্তারকে বিষয়টি জানাবেন গর্ভাবস্থায় চাকফি এড়িয়ে চলুন ধূমপানের অভ্যাস থাকলে সেটি ছেড়ে দিনযা করবেন না বসা ও শোয়া অবস্থা থেকে হঠাৎ করে দ্রুত দাঁড়িয়ে যাবেন না হঠাৎ করে নিচু হয়ে ঝুঁকে কিছু তুলবেন না নিচু হয়ে জুতা পরবেন না প্রয়োজনে একটি চেয়ার অথবা টুলে বসে জুতা পরবেন আঁটসাঁট জামা পরবেন না বদ্ধ ভ্যাঁপসা ও গরম জায়গায় বেশিক্ষণ থাকবেন না মাথা ঘুরানো অবস্থায় যেসব কাজ করলে দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা থাকে সেগুলো এড়িয়ে চলবেন যেমন মই অথবা সিঁড়ি বেয়ে ওঠানামা করা গাড়ি চালানো সাঁতার কাটা কিংবা ভারী যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা পিঠে হেলান দিয়ে সোজা হয়ে বা চিত হয়ে শুয়ে থাকবেন নাগর্ভকালীন সময়ের শেষের দিকে এবং প্রসববেদনার সময় পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা ঠিক নয় গর্ভধারণের ২৮ সপ্তাহ পর ঘুমানোর সময়েও পিঠে হেলান দিয়ে চিত হয়ে শুয়ে থাকা থেকে বিরত থাকবেন কেননা এভাবে শুয়ে থাকলে মৃত শিশু জন্মানোর সম্ভাবনা বাড়তে পারে[৭]সাধারণত গর্ভাবস্থায় মাথা ঘুরানো একটি স্বাভাবিক ঘটনা এরপরেও চেকআপের সময়ে এই বিষয়টি আপনার ডাক্তার অথবা মিডওয়াইফকে জানিয়ে রাখুনকখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে গর্ভকালীন সময়ে মাথা ঘুরানো কমন একটি লক্ষণ তবে কখনো কখনো কিছু গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যা (যেমন ব্রেইন স্ট্রোক কানের ইনফেকশন ও প্রিএকলাম্পসিয়া) এর কারণেও মাথা ঘুরাতে পারে তাই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে যেসব লক্ষণ থাকলে তাড়াতাড়ি ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে— মুখ হাত অথবা পা অবশ হয়ে আসলে মাথা ঘুরানোর সাথে বমি বমি ভাব থাকলে মাথা ঘুরানোর পাশাপাশি কানে শুনতে অসুবিধা হলে মাথা ঘুরানোর সাথে কানের ভেতরে ভোঁ ভোঁ কিংবা বাঁশির মতো শব্দ হচ্ছে মনে হলে রক্তশূন্যতা থাকলে বার বার অথবা লম্বা সময় ধরে মাথা ঘুরানোর সমস্যা হলে মাথা ঘুরানোর সমস্যা নিয়ে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা হলেমাথা ঘুরানোর সাথে নিচের ৯টি লক্ষণের কোনোটি থাকলে দেরি না করে ডাক্তারের কাছে নেওয়া জরুরি— যোনিপথ দিয়ে রক্তপাত হলে তলপেটে ব্যথা হলে বুকে ব্যথা হলে শ্বাসপ্রশ্বাস নিতে কষ্ট হলে বুক ধড়ফড় করলে মাথা ঘুরানোর পাশাপাশি চোখে ঝাপসা দেখলে কিংবা দৃষ্টিশক্তিতে পরিবর্তন আসলে মাথা ঘুরানোর পাশাপাশি মাথা ব্যথা হলে মাথা ঘুরানো প্রকট হলে মাথা ঘুরিয়ে পড়ে গিয়ে মাথা অথবা পেটে আঘাত পেলে কিংবা ১ মিনিটের বেশি সময় ধরে অজ্ঞান থাকলেপড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথা আপনার কি ইদানীং ঘন ঘন বাথরুমে যেতে হচ্ছে দিনে এমনকি রাতেও কিছুক্ষণ পরপরই প্রস্রাবের বেগ আসছেআপনার কি ইদানীং ঘন ঘন বাথরুমে যেতে হচ্ছে দিনে এমনকি রাতেও কিছুক্ষণ পরপরই প্রস্রাবের বেগ আসছেখুব বিরক্তিকর হলেও ঘন ঘন প্রস্রাব করা গর্ভাবস্থার কমন একটি লক্ষণ গর্ভাবস্থায় সময় পরিবর্তনের সাথে সাথে প্রস্রাবের হারও কমবেশি হতে দেখা যায় গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আপনার ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা শুরু হতে পারে পরবর্তীতে গর্ভাবস্থার মাঝের তিন মাসে প্রস্রাব হওয়ার মাত্রা অন্যান্য মাসগুলোর তুলনায় কিছুটা কমেও যেতে পারে তবে গর্ভাবস্থার শেষ তিন মাসের দিকে আবারও ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার হার আগের থেকে প্রায় অনেকটাই বেড়ে যেতে পারেমাঝেমধ্যে প্রস্রাবের পরিমাণ অনেক কম হলেও বারবার বেগ আসার কারণে বাথরুমে যাওয়া লাগে কখনো কখনো হাঁচিকাশি দিলে অথবা জোরে হাসলে প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে সামান্য প্রস্রাব বেরিয়ে আসতে পারে আবার ব্যায়ামের কিংবা ভারী কিছু তোলার সময়েও এমন হতে পারে তবে সাধারণত সন্তান প্রসবের পরে ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা ধীরে ধীরে ভালো হয়ে যায় গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার পেছনে বেশ কিছু কারণ রয়েছে—গর্ভাবস্থার প্রথম কিছু সপ্তাহে শরীরে বিভিন্ন ধরনের হরমোনের মাত্রার পরিবর্তনের কারণে কিডনির প্রস্রাব তৈরি করার ক্ষমতা অনেকখানি বেড়ে যায় ফলে কিডনি আরও বেশি করে প্রস্রাব তৈরির কাজ করে গর্ভে শিশুর অবস্থানের কারণেও প্রস্রাবের বেগ আগের থেকে বেড়ে যেতে পারে সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে শিশু আগের চেয়ে অনেকটা বড় হয়ে যায় সেসময়ে তার মাথা মূত্রথলিতে চাপ দেওয়া শুরু করে ফলে গর্ভধারণের শেষ তিন মাসেও ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা থাকতে পারে এ ছাড়াও গর্ভাবস্থার প্রথম কিছু সপ্তাহে শিশু তলপেটের নিচের দিকে মূত্রথলির পেছনে থাকে একারণে মূত্রথলীতে চাপ লেগে প্রস্রাবের বেগ বেড়ে যেতে পারে বলে ধারণা করা হয় আবার গর্ভাবস্থার মাঝের তিন মাসে শিশু তলপেটের ওপরের দিকে চলে আসে এজন্য তখন প্রস্রাবের বেগ কিছুটা কমে যেতে পারে বলে মনে করা হয় তবে এসবের পক্ষে এখনো তেমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি এ ছাড়াও এসময়ে গর্ভবতী নারীদের পা ও গোড়ালিতে পানি জমে যায় রাতের বেলা কাত হয়ে শুলে শরীর সেখান থেকে পানি শুষে নিতে থাকে এটিও রাতে বার বার প্রস্রাব হওয়ার একটি কারণ হতে পারেবিশেষ দ্রষ্টব্য প্রস্রাবের বেগ আসলে তা চেপে রাখার চেষ্টা করবেন না এতে ইউরিন ইনফেকশন হওয়া সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাবের সমস্যা হওয়া স্বাভাবিক গর্ভকালীন সময়ে এই সমস্যা সম্পূর্ণভাবে দূর করা সম্ভব নাই হতে পারে তবে সন্তান জন্মের পর ধীরে ধীরে এই সমস্যা আপনাআপনি ভালো হয়ে যায় তাই এটি নিয়ে অযথা দুশ্চিন্তা করবেন নাকিছু সহজ নিয়মকানুন মেনে চললে আপনি এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারবেন যেমন—১ প্রস্রাবের সময়ে দেহভঙ্গিপ্রস্রাব করার সময়ে কোমর একটু পেছনের দিকে বাঁকিয়ে সামনের দিকে ঝুঁকে বসুন এভাবে ঝুঁকে বসে থাকা অবস্থাতেই সামনেপেছনে দুলুনির মতো করে নড়াচড়ার চেষ্টা করুন তারপর প্রস্রাব করুন গর্ভাবস্থার শেষের দিকের সময়টায় এই পদ্ধতি মূত্রথলি ভালোভাবে খালি হতে সাহায্য করে এতে একবার প্রস্রাব করার কিছুক্ষণ পরেই আবার প্রস্রাবের বেগ আসে না২ পর্যাপ্ত পানি পান করারাতে বারবার প্রস্রাব করার জন্য বাথরুমে যাওয়া বিরক্তিকর হতে পারে তবে এজন্য দৈনিক পানি পান করার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়া যাবে না সমাধান হিসেবে রাতে ঘুমানোর কয়েক ঘন্টা আগে পানি পান করা থেকে বিরত থাকতে পারেন[৭] সেই সাথে সারাদিন নিয়মিত বিরতিতে পর্যাপ্ত পানি পান করার বিষয়টি নিশ্চিত করতে হবে তাহলে হয়তো ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে পানি পান করার প্রয়োজন হবে নাউল্লেখ্য প্রস্রাব করার জন্য রাতে বারবার বাথরুমে যেতে হলে ঘুমের ব্যাঘাত হতে পারে সেখান থেকে ক্লান্ত লাগতে পারে মনমেজাজের ওপরেও প্রভাব পড়তে পারে এজন্য পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিশ্চিত করার চেষ্টা করুনগুরুত্বপূর্ণ তথ্য খেয়াল রাখুন রাতে ঘুমানোর আগে পানি না পান করলেও দৈনন্দিন পানির পরিমাণ যেন ঠিক থাকে গর্ভাবস্থায় শিশুর চাহিদা পূরণের জন্য অধিক পানির প্রয়োজন হয় এজন্য গর্ভাবস্থায় অন্তত ২–৩ লিটার অথবা ৮–১২ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করতে হবে[৮]৩ ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলাক্যাফেইনযুক্ত পানীয় প্রস্রাবের হার বাড়াতে পারে এজন্য কফি চা ও কোমল পানীয়ের (যেমন কোক ফান্টা সেভেনআপ ও পেপসি) মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় এড়িয়ে চলুনজেনে রাখা ভালো গর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় পান করা অথবা খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন[৯] এর চেয়ে বেশি পরিমাণে ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খেলে গর্ভপাত হওয়ার বা গর্ভের শিশু মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যেতে পারে৪ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখাগর্ভাবস্থায় একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত ওজন বাড়া স্বাভাবিক এই বাড়তি ওজন শিশুর সুস্বাস্থ্যের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ তবে বাড়তি ওজন স্বাভাবিক সীমার ছাড়িয়ে গেলে সেটি মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ানোর পাশাপাশি প্রস্রাবের বেগ বাড়িয়ে দিতে পারে[১০]তাই গর্ভাবস্থায় যেন আপনার ওজন স্বাভাবিকের অতিরিক্ত বেড়ে না যায় সেদিকে লক্ষ রাখুন আপনার জন্য কতটুকু ওজন বাড়া স্বাভাবিক সেটি গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে জিজ্ঞেস করে নিন সেই অনুযায়ী সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খান এবং নিয়মিত ব্যায়াম করুন৫ কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণ করাকোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে ঘন ঘন প্রস্রাব ও মূথনালীর ইনফেকশনসহ বিভিন্ন রোগ সৃষ্টি হতে পারে[১১] এজন্য সুস্থ জীবনধারণের মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করুন যেমন পর্যাপ্ত পানি পান করা আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া এবং ব্যায়াম করার মাধ্যমে কোষ্ঠকাঠিন্য নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়৬ প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণে ব্যায়ামপ্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণের জন্য আপনি একটি বিশেষ ব্যায়াম করতে পারেন এই বিশেষ ধরনের ব্যায়ামটি পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ বা কেগেল ব্যায়াম নামে পরিচিতপ্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করার সাথে সাথে প্রসব ও প্রসব পরবর্তী সময়েও এই ব্যায়ামটি সুবিধাজনক ফল দেয় এই ব্যায়ামের মাধ্যমে যোনিপথ ও প্রস্রাবের রাস্তার পেশিগুলো মজবুত হয় এর ফলে পরবর্তীতে প্রস্রাবের বেগ নিয়ন্ত্রণ করা অনেকটাই সহজ হয়ে যায়চেষ্টা করুন দিনে এভাবে তিন সেট ব্যায়াম করতে মনে রাখার সুবিধার জন্য প্রতিবেলা খাওয়ার আগে এক সেট ব্যায়াম করতে পারেনকেগেল ব্যায়াম করার জন্য নিচের পদ্ধতি অনুসরণ করুন—পায়খানার রাস্তা চাপ দিয়ে এমনভাবে বন্ধ করে রাখুন যেন পায়খানা আটকানোর চেষ্টা করছেন একই সাথে যোনিপথকে চাপ দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন প্রস্রাবের রাস্তাতেও এমনভাবে চাপ দিন যেন প্রস্রাব আটকানোর চেষ্টা করছেন প্রথম কয়েকবার করার সময়ে ব্যায়ামটি দ্রুত করুন ওপরের পদ্ধতিতে দ্রুত চাপ প্রয়োগ করুন এবং ছেড়ে দিন এবার ব্যায়ামটা ধীরে ধীরে করার চেষ্টা করুন যতক্ষণ সম্ভব হয় চাপ দিয়ে ধরে রাখুন এভাবে চাপ ধরে রেখে ১০ পর্যন্ত গুনুন তারপর চাপ ছেড়ে দিন এরকম ভাবে আট বার চাপ দেওয়া এবং ছেড়ে দেওয়াকে এক সেট ব্যায়াম ধরা হয় এই ব্যায়ামটি প্রস্রাব করার সময়ে করা উচিত নয় ব্যায়াম করতে কোনো অসুবিধা হলে অথবা নির্দেশনা ঠিকমতো বুঝতে না পারলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন মাঝেমধ্যে ইউরিন ইনফেকশন বা ইউটিআই এর কারণেও ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে গর্ভাবস্থায় নারীদের প্রস্রাবের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়[১২] এজন্য ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার সাথে কোনো অস্বাভাবিক লক্ষণ দেখা গেলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত লক্ষণগুলো হচ্ছে—প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা অথবা জ্বালাপোড়া হওয়া স্বাভাবিকের চেয়ে ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া রাতে বারবার প্রস্রাবের বেগ আসা অস্বাভাবিক গন্ধযুক্ত অথবা ঘোলাটে প্রস্রাব হওয়া হঠাৎ প্রস্রাবের বেগ আসা অথবা বেগ ধরে রাখতে সমস্যা হওয়া তলপেটে ব্যথা হওয়া প্রস্রাবের সাথে রক্ত যাওয়া কোমরের পেছনে পাঁজরের ঠিক নিচের অংশে ব্যথা হওয়া জ্বর আসা কিংবা গা গরম লাগা এবং শরীরে কাঁপুনি হওয়া শরীরের তাপমাত্রা ৩৬° সেলসিয়াস বা ৯৬৮° ফারেনহাইট এর চেয়ে কমে যাওয়া ক্লান্তি ও বমি বমি লাগাএসব লক্ষণ প্রস্রাবের ইনফেকশন থেকে শুরু করে কিডনির ইনফেকশনসহ বিভিন্ন গুরুতর স্বাস্থ্য জটিলতার কারণে হতে পারে এগুলো দেখা দিলে প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন এবং দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিন ইনফেকশন নিশ্চিত হলে ডাক্তার প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিক সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনপড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথাগর্ভাবস্থায় ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অ্যান্টিবায়োটিক অথবা অন্য কোনো ধরনের ঔষধ সেবন করা বিপদজনক হতে পারে এজন্য এ অবস্থায় যেকোনো ঔষধ সেবনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিনকিডনির ইনফেকশন প্রসব সংক্রান্ত জটিলতা বাড়িয়ে তুলতে পারে[১৩] এজন্য ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ঔষধ সেবন করা জরুরিগুরুত্বপূর্ণ তথ্য কখনো কখনো গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়ার সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করতে পারে এর পাশাপাশি ঘন ঘন পিপাসা পাওয়া ক্লান্ত লাগা এবং মুখ শুকিয়ে যাওয়া—এ ধরনের অনুভূতিও হতে পারে এগুলো গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এর লক্ষণ৷ তাই আপনি আগে থেকেই ডায়াবেটিসে ভুগলে অথবা গর্ভকালীন সময়ে তীব্র ঘন ঘন প্রস্রাবের সাথে গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের লক্ষণ থাকলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন গর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় প্রায়ই মাথা ব্যথা হতে পারে সাধারণ মাথা ব্যথা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর না হলেও আপনার জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে মাথা ব্যথা সেরে উঠতে সাধারণত বেশ কিছুটা সময় লাগে তবে কিছু সহজ পরামর্শ মেনে চলার মাধ্যমে আপনি অনেকাংশেই মাথা ব্যথা এড়িয়ে চলতে পারবেনগর্ভবতী মায়েদের গর্ভাবস্থায় প্রায়ই মাথা ব্যথা হতে পারে সাধারণ মাথা ব্যথা গর্ভের শিশুর জন্য ক্ষতিকর না হলেও আপনার জন্য অস্বস্তিকর হতে পারে মাথা ব্যথা সেরে উঠতে সাধারণত বেশ কিছুটা সময় লাগে তবে কিছু সহজ পরামর্শ মেনে চলার মাধ্যমে আপনি অনেকাংশেই মাথা ব্যথা এড়িয়ে চলতে পারবেন গর্ভাবস্থার প্রথম কয়েক সপ্তাহে মাথা ব্যথা আপনাকে বেশ ভোগাতে পারে তবে সময়ের সাথে এই সমস্যা কমতে থাকে সাধারণত গর্ভধারণের শেষের ছয় মাসে মাথা ব্যথার সমস্যা অনেকটাই কমে যায় কারও কারও ক্ষেত্রে মাথা ব্যথা পুরোপুরি সেরেও যায় গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন কারণে আপনার মাথা ব্যথা হতে পারে যেমন—হরমোনের পরিবর্তন ক্ষুধা লাগা অথবা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকা এতে রক্তে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে গিয়ে মাথা ব্যথা হতে পারে পানিশূন্যতা বা ডিহাইড্রেশন মানসিক চাপ ক্লান্তি ও পর্যাপ্ত ঘুমের অভাব দৃষ্টিশক্তির সমস্যা অস্বাস্থ্যকর দেহভঙ্গিতে শোয়া বসা অথবা দাঁড়িয়ে থাকা বেশি স্ক্রিনটাইমের কারণে অর্থাৎ বেশিক্ষণ ধরে মোবাইল ল্যাপটপ অথবা টিভির দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের ওপর চাপ পড়া ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় বেশি বেশি পান করাএ ছাড়াও কিছু মারাত্মক জটিলতার কারণে মাথা ব্যথা হতে পারে যেমন প্রিএকলাম্পসিয়া ব্রেইনে রক্তক্ষরণ ও ব্রেইন অথবা ব্রেইন এর পর্দার ইনফেকশন এসব কারণ নিয়ে আর্টিকেলের পরবর্তী অংশে বিস্তারিত তুলে ধরা হয়েছে গর্ভাবস্থায় সাধারণ মাথা ব্যথার চিকিৎসায় প্রথমে কিছু ঘরোয়া উপায় অবলম্বন করুন এগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে আপনি হয়তো ঔষধ ছাড়াই মাথা ব্যথা সারিয়ে তুলতে পারবেনএরপরেও মাথা ব্যথা না সারলে ঔষধ খেতে পারেন তবে তীব্র মাথা ব্যথার ক্ষেত্রে যত দ্রুত সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিন এ ছাড়াও গর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা কখন বিপদজনক হতে পারে সেটি নিচে তুলে ধরা হয়েছে সেসব ক্ষেত্রেও দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেঘরোয়া সমাধানগর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথা মোকাবেলার প্রধান উপায় হলো মাথা ব্যথার কারণগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলা গর্ভাবস্থায় ঘরোয়াভাবে মাথা ব্যথা কমাতে যা করবেন—১ মাথায় ঠাণ্ডা সেঁক দিনহালকা মাথা ব্যথায় ঠাণ্ডা সেঁক দিলে সেটি ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে[১] এজন্য কিছু বরফের টুকরা একটি তোয়ালে কিংবা গামছায় পেঁচিয়ে নিন এরপর বিছানায় শুয়ে সেটি কপালের ওপরে দিয়ে রাখুন এ ছাড়া ফার্মেসি থেকে কোল্ড প্যাক কিনে সেটিও কপালে দিয়ে রাখতে পারেন২ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনপর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার না খেলে আপনি পানিশূন্যতায় ভুগতে পারেন এ ছাড়াও অতিরিক্ত গরমের জন্য কিংবা শারীরিক পরিশ্রমের কারণে শরীর থেকে পানি বের হয়ে গিয়ে ডিহাইড্রেশন বা পানিশূন্যতার সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে যা থেকে আপনার মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে তাই প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাবেনএকজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে[২] তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেন৩ একটানা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকবেন নাএকটানা অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা কমে গিয়ে মাথা ব্যথা হতে পারে তাই রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা ঠিক রাখতে নিয়মিত বিরতিতে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাবেন প্রয়োজনে দৈনিক তিনবেলা বেশি করে খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে ছয় বার খান অথবা দৈনিক তিনবার খাওয়ার পাশাপাশি ক্ষুধা লাগলে পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ও হালকা নাস্তা খেতে পারেনএ ছাড়া অবশ্যই সকালে ঠিকমতো নাস্তা খাওয়ার চেষ্টা করবেন রাতে ঘুমানোর আগে কোনো হালকা খাবার খেয়ে নিবেন এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খেয়ে ঘুমাতে যেতে পারেন দুধ লম্বা ও ভালো ঘুমে সাহায্য করেপড়ুন গর্ভবতীর খাবার তালিকা৪ প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিনগর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরি রাতে অন্তত ৭–৯ ঘণ্টা ভালোমতো ঘুমানোর চেষ্টা করুন[৩][৪] প্রয়োজনে দিনের বেলাও কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিতে পারেনএ ছাড়া মাথা ব্যথা হলে অন্ধকার ও শান্ত জায়গায় শুয়ে থাকতে পারেন কিংবা কাজ করতে থাকলে কিছুক্ষণ চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন এটি মাথা ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারেঘুমের একটি রুটিন মেনে চলুন প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়ার এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করবেন খুব বেশি অথবা খুব কম না ঘুমিয়ে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন৫ ক্যাফেইনযুক্ত খাবার ও পানীয় এড়িয়ে চলুনঅতিরিক্ত চাকফি ও কোকের মতো ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় ও খাবার খেলে মাথা ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়[৫] তাই এগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুন তবে হুট করে ক্যাফেইন জাতীয় খাবার খাওয়া বন্ধ না করে ধীরে ধীরে কমিয়ে আনুন চাকফির বিকল্প হিসেবে চা পাতা ছাড়া বানানো আদা চা বা মসলা চা দুধ অথবা চিনিমুক্ত ফলের রস বেছে নিতে পারেনগর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় খাবার অথবা পানীয় খাওয়া এড়িয়ে চলবেন[৬] সাধারণত ২ কাপ কফি কিংবা ২–৩ কাপ চায়েই এই পরিমাণ ক্যাফেইন থাকতে পারে৬ দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা করুনগর্ভাবস্থায় যেকোনো ধরনের দুশ্চিন্তা যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন দুশ্চিন্তা এড়িয়ে চলতে পারলে টেনশন টাইপ মাথা ব্যথা প্রতিরোধ করা যায় এজন্য চেষ্টা করবেন হাসিখুশি থাকতে মন ভালো রাখতেমাথায় কোনো চিন্তা ঘুরপাক খেতে থাকলে আপনার পছন্দের কোনো কাজে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করতে পারেন পরিবারের কারও সাথে দুশ্চিন্তার বিষয়টি ভাগাভাগি করে নিতে পারেন গর্ভাবস্থায় করা যায় এমন কিছু যোগব্যায়াম ও মেডিটেশনের মাধ্যমে মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার চেষ্টা করতে পারেন এ ছাড়া আপনি নিয়মিত শরীরচর্চা করলে সেটি মানসিক চাপ কমিয়ে আনতে সাহায্য করবেনিঃশ্বাসের ব্যায়াম উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন এই ব্যায়ামটি শুয়ে চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারে আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেন ব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন— শুয়ে থাকলে পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন হাতের তালু ওপরের দিকে অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুন চেয়ারে বসে থাকলে দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন দাঁড়িয়ে থাকলে পা দুটো সমান ভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন এবার লম্বা করে শ্বাস নিন খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিন তারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে নিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিতে থাকুন তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন৭ আলোবাতাসপূর্ণ ও খোলামেলা ঘরে থাকুনজানালাবিহীন বদ্ধ ঘরে থাকলে এবং অতিরিক্ত গরম আবহাওয়ার কারণেও মাথা ব্যথা হতে পারে তাই ভ্যাপসা ও গুমোট ঘরে না থাকার চেষ্টা করবেন পর্যাপ্ত আলোবাতাসপূর্ণ ও খোলামেলা বাসায় থাকলে ভালো হয় সেটি সম্ভব না হলে প্রতিদিন আশেপাশের খোলামেলা জায়গায় কিছুক্ষণ হালকা হাঁটাহাঁটি করতে পারেন৮ মাথা ব্যথা উদ্রেক করে এমন জিনিস এড়িয়ে চলুনআপনি যদি লক্ষ করে থাকেন যে কিছু নির্দিষ্ট জিনিস আপনার মাথা ব্যথা (বিশেষ করে মাইগ্রেন) উদ্রেক করে তাহলে সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করবেন এভাবে আপনি অনেক ক্ষেত্রেই মাথা ব্যথা প্রতিরোধ করতে পারবেন মাথা ব্যথার উদ্রেক ঘটাতে পারে এমন কিছু জিনিস হলো—তীব্র শব্দ তীব্র কিংবা উজ্জ্বল সাদা আলো নির্দিষ্ট খাবার যেমন চা কফি কমলা চকলেট ও পনির তীব্র গন্ধউল্লেখ্য একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম জিনিসের কারণে মাথা ব্যথা শুরু হতে পারে তাই আপনার ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কোনো জিনিসে মাথা ব্যথা হয় কি না সেটি খুঁজে বের করার চেষ্টা করুনঔষধগর্ভাবস্থায় মাথা ব্যথার চিকিৎসায় পেইনকিলার বা ব্যথার ঔষধ হিসেবে সাধারণত প্রথম পছন্দ হলো প্যারাসিটামল গর্ভকালীন সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে হওয়া মাথা ব্যথা সাধারণত প্রসবের পরপরই ভালো হয়ে যায় তবে প্রসবের পরেও যদি আপনার মাথা ব্যথার সমস্যা থাকে তাহলে এর পেছনে অন্য কোনো কারণ থাকতে পারে সেক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিনএ ছাড়া ঘরোয়া সমাধান সঠিকভাবে মেনে চলার এবং ঔষধ (যেমন প্যারাসিটামল) খাওয়ার পরেও আপনার মাথা ব্যথা ভালো না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন উল্লেখ্য গুরুতর সমস্যার কারণে মাথা ব্যথা হলে সেটি সাধারণত বিশ্রাম নিলেও ভালো হয়ে যায় না বরং ধীরে ধীরে ব্যথার আরও অবনতি হতে পারে এবং মাথা ব্যথা বারবার ফিরে আসতে পারে এ ধরনের মাথা ব্যথা হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে নিচের লক্ষণগুলোর যেকোনোটি দেখা দিলে দেরি না করে রোগীকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে—তীব্র মাথা ব্যথা চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন চোখে ঝাপসা দেখা অথবা চোখে আলোর ঝলসানি দেখা পাঁজর বরাবর ঠিক নিচে ব্যথা হওয়া হঠাৎ করে মুখ হাত পায়ের পাতা ও গোড়ালি ফুলে যাওয়া ওপরের যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়াএসব প্রিএক্লাম্পসিয়া এর লক্ষণ প্রিএক্লাম্পসিয়া উচ্চ রক্তচাপ জনিত একটি মারাত্মক জটিলতা এটি হলে আপনার জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা নিতে হবে সময়মতো চিকিৎসা শুরু না করলে এটি আপনার ও সন্তানের জন্য বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেএ ছাড়াও মাথা ব্যথা কখনো কখনো ব্রেইনে রক্তক্ষরণ অথবা ব্রেইন বা এর পর্দায় ইনফেকশনসহ মারাত্মক কোনো রোগের লক্ষণ হতে পারে তাই নিচের কোনো লক্ষণ দেখা দিলেও রোগীকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে যাবেন— গর্ভকালীন সময়ে হবু মায়েরা প্রায়ই ক্লান্তিবোধ করে থাকেন বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস ও শেষের তিন মাসে এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়[১][২] গর্ভাবস্থায় অবসাদ বা ক্লান্তি একটি কমন উপসর্গ হলেও কারও কারও ক্ষেত্রে লক্ষণটি প্রবলভাবে দেখা দিতে পারে ফলে এটি দৈনন্দিন জীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারেগর্ভকালীন সময়ে হবু মায়েরা প্রায়ই ক্লান্তিবোধ করে থাকেন বিশেষ করে গর্ভধারণের প্রথম তিন মাস ও শেষের তিন মাসে এই ধরনের সমস্যা বেশি দেখা যায়[১][২] গর্ভাবস্থায় অবসাদ বা ক্লান্তি একটি কমন উপসর্গ হলেও কারও কারও ক্ষেত্রে লক্ষণটি প্রবলভাবে দেখা দিতে পারে ফলে এটি দৈনন্দিন জীবনে ভোগান্তি সৃষ্টি করতে পারে গর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয়৷ এসব পরিবর্তন আপনার কাজ করার শক্তি কমিয়ে ফেলে অবসাদ বা ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারেএসময়ে মূলত আপনার শরীরে বিভিন্ন হরমোন (যেমন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন) এর পরিবর্তনের কারণে আপনি ক্লান্তি অথবা দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন[৩] পাশাপাশি গর্ভধারণের শেষ তিন মাসে শরীরের ওজন অনেকখানি বেড়ে যাওয়ার জন্যও আপনার ক্লান্ত লাগতে পারেএসব ছাড়াও আপনার গর্ভকালীন ক্লান্তির পেছনে অন্যান্য কিছু কারণ থাকতে পারে যেমন—আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা নিদ্রাহীনতা অথবা অপর্যাপ্ত ঘুম রক্তচাপ কমে যাওয়া রক্তে সুগার কমে যাওয়া পিঠ ব্যথা কোমর ব্যথা ও নিতম্বের ব্যথা বদহজম জনিত সমস্যা মর্নিং সিকনেস (বমি বমি ভাব ও বমি হওয়া) দুশ্চিন্তা অথবা মানসিক চাপ সাধারণত গর্ভকালীন ক্লান্তির জন্য আপনার খারাপ লাগতে পারে কিংবা অসুস্থতা বোধ হতে পারে এতে আপনার গর্ভের সন্তানের কোনো ক্ষতি হবে নাঅনেকে গর্ভাবস্থায় প্রচণ্ড ক্লান্তি বোধ করে থাকেন এমন প্রচণ্ড ক্লান্তি বোধ করাও অস্বাভাবিক নয় তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটা গুরুতর স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে যেমন আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা ও ডিপ্রেশন এমনটা হলে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিশ্চিন্ত হয়ে নেওয়া ভালোএ ছাড়াও আপনি যদি সম্পূর্ণ গর্ভকালজুড়ে অবসাদ বোধ করেন অথবা আপনার ক্লান্তিবোধ ক্রমাগত বেড়ে যেতে থাকে তাহলে একজন চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন ১ প্রয়োজনীয় বিশ্রাম নিনগর্ভকালীন সময়ে ক্লান্তি মূলত আপনার শরীরের যে এখন বিশ্রাম প্রয়োজন তাকেই নির্দেশ করে কাজেই এই সময়টায় যতটা সম্ভব আপনার পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নিন দৈনন্দিন যে কাজগুলো করতে আপনার বেশি কষ্ট হচ্ছে সেগুলোতে তাদের সহায়তা চান[৪]রাতে তাড়াতাড়ি ঘুমাতে যাওয়া কিংবা কাজের মাঝে মাঝে ১০–১৫ মিনিটের জন্য পা তুলে বিশ্রাম নেওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে পারেন আপনি কর্মজীবী নারী হয়ে থাকলে কাজের ফাঁকে ফাঁকে অন্য একটি চেয়ার অথবা টুলের ওপর দুই পা তুলে বসে বিশ্রাম নিতে পারেন এটি পরবর্তীতে আপনার গর্ভকালীন পায়ে পানি আসা রোধেও সাহায্য করবে কোনোভাবেই আপনার সহ্যক্ষমতা বা ধারণক্ষমতার বেশি পরিশ্রম করতে যাবেন না২ ঘুমের জন্য একটি নিয়মিত রুটিন অনুসরণ করুননিয়মিত ও পর্যাপ্ত ঘুমানোর অভ্যাস সারাদিন আপনাকে সতেজ রাখতে পারে[৫] নিয়মিত ঘুমের জন্য প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমাতে যান এবং ঘুম থেকে উঠুন তাড়াতাড়ি বিছানায় যাওয়ার চেষ্টা করুন দিনে কম ঘুমানোর চেষ্টা করুন এতে রাতে ভালো ঘুম হবে ঘুমানোর পরিবেশ যতটা সম্ভব আরামদায়ক করে তুলুন সাধারণত ৭৯ ঘণ্টার ঘুমকেই আদর্শ বলে ধরা হয়[৬][৭]৩ পুষ্টিকর খাবার খানপুষ্টিকর খাবার আপনাকে সারাদিন শক্তি সরবরাহ করবে এবং আপনার দুর্বলতা কমাতে সাহায্য করবে সাধারণত প্রোটিন ও শর্করার সমন্বয়ে তৈরি খাবার আপনাকে দীর্ঘসময় ধরে শক্তি দিবে আপনি প্রয়োজনীয় পরিমাণ ক্যালরিযুক্ত খাবার খাচ্ছেন কি না এটা অবশ্যই খেয়াল রাখবেন এই ব্যাপারে আপনি একটি গর্ভকালীন সুষম খাদ্যতালিকা অনুসরণ করতে পারেনবমি বমি ভাবের জন্য খাবার খেতে সমস্যা হলে একবারে অনেকখানি না খেয়ে দিনে ছয় বারে অল্প অল্প করে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন এতে আপনার রক্তে সুগার লেভেল ঠিক থাকবে যা আপনার ক্লান্তি দূর করতে সাহায্য করবে৪ ক্যাফেইন ও চিনি খাওয়া কমিয়ে দিনচাকফিতে থাকা ক্যাফেইন ও মিষ্টি জাতীয় খাবারে ব্যবহৃত চিনি আমাদের তাৎক্ষণিক শক্তি দেয় যার জন্য দুর্বল অনুভব করলেই অনেক গর্ভবতী নারী ক্যাফেইন ও চিনিযুক্ত খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়েন এই অভ্যাস এড়িয়ে চলতে হবে কেননা তাৎক্ষণিকভাবে শক্তি যোগালেও এগুলো পরবর্তীতে আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে যার কারণে আপনার ক্লান্তি আরও বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকে বিকল্প হিসেবে আস্ত ফল খেতে পারেন৫ পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করুনপর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা আপনার ও আপনার গর্ভের সন্তানের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এটি আপনার ক্লান্তি বা অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে গর্ভাবস্থায় দৈনিক গড়ে ২–৩ লিটার বা ৮–১২ গ্লাস পানি পান করার চেষ্টা করুন[৮] তবে ঘন ঘন প্রস্রাবের জন্য যদি আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে তাহলে ঘুমানোর ঠিক আগে পানি পান না করাই ভালো৬ ব্যায়াম করার অভ্যাস গড়ে তুলুনযদিও এই সময়টায় আপনার স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজ করতেই আলসেমি লাগতে পারে তবুও নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস গড়ে তোলার চেষ্টা করুনএকজন গর্ভবতী নারীর সপ্তাহে পাঁচ দিন দৈনিক অন্তত ৩০ মিনিট মাঝারি ধাঁচের ব্যায়াম করা দরকার মাঝারি ধাঁচের ব্যায়াম হিসেবে দ্রুত হাঁটা জগিং অথবা মাতৃত্বকালীন ইয়োগা বা যোগব্যায়াম করতে পারেননিয়মিত ব্যায়াম আপনার ও আপনার গর্ভের সন্তানের জন্য খুবই উপকারী এটি আপনার অবসাদ দূর করতে মন মেজাজ ভালো রাখতে রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি করতে এবং রাতে ভালো ঘুম হতে সহায়তা করবে[৯]রাতে ঘুমাতে যাওয়ার ঠিক আগে ব্যায়াম না করাই ভালো এটি বরং আপনার ঘুমের ব্যাঘাত ঘটাবে যারা আগে থেকেই দৌড়ানোর মতো ভারী ব্যায়াম করে অভ্যস্ত তারা চাইলে সেটি চালিয়ে যেতে পারেন তবে আপনার জন্য কষ্টদায়ক এমন কোনো ভারী ব্যায়াম অথবা দীর্ঘসময় ধরে কোনো ব্যায়াম করবেন না৭ দুশ্চিন্তা কমান ও মন প্রফুল্ল রাখুনঅতিরিক্ত দুশ্চিন্তা থেকে ক্লান্তি বা অবসাদের সৃষ্টি হয় দুশ্চিন্তা কমানোর জন্য আপনি মনকে রিলাক্স করে বা আরাম দেয় এমন কিছু কাজ করতে পারেন যেমন অবসর সময়ে গান শোনা গল্প অথবা কবিতার বই পড়া কিংবা শখের কাজ করা এ ছাড়াও বন্ধুবান্ধব অথবা পরিবারের মানুষদের সাথে গল্পগুজব করেও সময় কাটাতে পারেন এতে আপনার দুশ্চিন্তা কমে মন হালকা হতে পারেকখন চিকিৎসকের শরণাপন্ন হবেন গর্ভাবস্থায় ক্লান্তি বোধ করা বেশ স্বাভাবিক একটি লক্ষণ তবে এর পাশাপাশি নিচের লক্ষণগুলো থাকলে দ্রুত গাইনী ডাক্তারের শরণাপন্ন হবেন— আগে থেকেই থাইরয়েডের সমস্যা থাকা মাথা ঘুরানো অথবা অজ্ঞান হয়ে যাওয়া বুক ধড়ফড় করা চেহারা ফ্যাকাশে দেখানো পেটের উপরিভাগে ব্যথা অস্বাভাবিক পিপাসা অনুভব করা এবং ঘন ঘন প্রস্রাব হওয়া প্রস্রাবের পরিমাণ কমে যাওয়া প্রচণ্ড মাথাব্যথা শ্বাসকষ্ট হওয়া পায়ের পাতা অথবা হাত ফুলে যাওয়া চোখে দেখতে সমস্যা হওয়া যেমন চোখে ঝাপসা দেখা আলোর ঝলকানি দেখা একই জিনিস দুইটি করে দেখা অথবা কিছুক্ষণের জন্য কিছুই দেখতে না পারা[১০] ডিপ্রেশনের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পাওয়া প্রথম ত্রৈমাসিকগর্ভধারণের প্রথম তিন মাস অর্থাৎ প্রথম সপ্তাহ থেকে ১৩ সপ্তাহ পর্যন্ত আপনার শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন ঘটে এই সমস্ত পরিবর্তন থেকে ক্লান্তি লাগতে পারে এসবের মধ্যে রয়েছে—হরমোনাল পরিবর্তন প্রোজেস্টেরোন নামক এক প্রকার হরমোন এই সময়টায় হুট করে অনেক বেড়ে যায় আকস্মিক এই হরমোনাল পরিবর্তনে শারীরিক ও মানসিক অবসাদ তৈরি হতে পারে রক্ত সরবরাহ বৃদ্ধি গর্ভের শিশুর জন্য পর্যাপ্ত পুষ্টি ও অক্সিজেনের সরবরাহ করতে গিয়ে আপনার শরীর রক্ত সরবরাহের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়—যা আপনাকে ক্লান্ত করে ফেলতে পারে অন্যান্য শারীরিক পরিবর্তন বিপাকক্রিয়া বেড়ে যাওয়া হার্টরেট বা হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি রক্তে সুগার কমে যাওয়া অথবা নিম্ন রক্তচাপ থেকে আপনার ক্লান্ত লাগতে পারেদ্বিতীয় ত্রৈমাসিকপ্রথম ত্রৈমাসিকের শেষে আপনার শরীর ধীরে ধীরে পরিবর্তনগুলোর সাথে খাপ খাইয়ে নেবে মর্নিং সিকনেসও সাধারণত এই সময়ে কমে আসে সব মিলিয়ে গর্ভধারণের মাঝের তিন মাস আপনি কিছুটা হলেও নিজেকে সক্রিয় অনুভব করবেন অর্থাৎ প্রথম তিন মাসের তুলনায় কম ক্লান্তিতে ভুগবেনকাজেই প্রয়োজনীয় কাজগুলো এর মধ্যেই সেরে ফেলুন কারণ সামনের তিন মাস সম্ভবত আপনি আবারও ক্লান্তি বোধ করতে যাচ্ছেনশেষ ত্রৈমাসিকএবার আপনার ক্লান্তি আরও প্রবলভাবে ফিরে আসতে পারে এর কারণগুলো হতে পারে—গর্ভের শিশু এই সময়ে দ্রুতগতিতে বড় হয় যার জন্য আপনার ওজন ও পেটের আকার লক্ষণীয়ভাবে বেড়ে যায় শরীরের অতিরিক্ত এই ওজন বহন করা আপনার জন্য হতে পারে কষ্টকর ও ক্লান্তিদায়ক গর্ভবতী মায়ের বড় হয়ে যাওয়া পেটকে অনেকসময় বেবি বাম্প বলা হয় এই বাড়ন্ত বেবি বাম্পসহ অন্যান্য লক্ষণ (যেমন বদহজম বুক জ্বালাপোড়া করা কিংবা রেস্টলেস লেগ সিনড্রোম) এর কারণে গর্ভকালীন নিদ্রাহীনতা দেখা দিতে পারে যা পরবর্তীতে ক্লান্তি সৃষ্টি করতে পারে সন্তান জন্মদান ও এর পরবর্তী প্রক্রিয়া নিয়ে অনেক হবু মা এই সময়টায় মানসিক চাপ বোধ করেন অথবা অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করেন—যা ঘুমের ব্যাঘাত ঘটায় একারণেও ক্লান্ত লাগতে পারেরেস্টলেস লেগ সিন্ড্রোম কী এই রোগে পা নড়াচড়া করতে থাকার প্রচণ্ড ইচ্ছা কাজ করে এই ইচ্ছা রোগী কোনোভাবেই নিয়ন্ত্রণ করতে পারে না সাধারণত সন্ধ্যা অথবা রাতে এই সমস্যা বেড়ে যায় একারণে নিদ্রাহীনতার দেখা দিতে পারে এবং আগে থেকেই ডিপ্রেশনের সমস্যা থাকলে তা বেড়ে যেতে পারে গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা লাগা পেট ভরা ভরা লাগা কিংবা পেটে গ্যাস জমেছে বলে মনে হওয়া একটি পরিচিত সমস্যা সাধারণত গর্ভধারণের শুরুর দিকের সময়টায় এই সমস্যা দেখা দেয় এমনকি সন্তান প্রসবের কয়েক সপ্তাহ পর পর্যন্তও পেট ফাঁপার সমস্যা থাকতে পারেগর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা লাগা পেট ভরা ভরা লাগা কিংবা পেটে গ্যাস জমেছে বলে মনে হওয়া একটি পরিচিত সমস্যা সাধারণত গর্ভধারণের শুরুর দিকের সময়টায় এই সমস্যা দেখা দেয় এমনকি সন্তান প্রসবের কয়েক সপ্তাহ পর পর্যন্তও পেট ফাঁপার সমস্যা থাকতে পারেপেট ফাঁপা কেন হয় এবং এটি ঘরে বসেই কীভাবে নিরাময় করবেন—এ নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে গর্ভধারণের ফলে আপনার দেহে কিছু বিশেষ হরমোনের পরিমাণ অনেকখানি বেড়ে যায় এমন একটি হরমোন হলো প্রোজেস্টেরন এই হরমোনের প্রভাবে খাবার হজমের সাথে জড়িত পেশিগুলো কিছুটা শিথিল হয়ে আসে এবং হজমের গতি কমে যায়[১] এতে করে আপনার পেটে গ্যাস তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে এবং পেট ফাঁপা লাগে অনেকের ক্ষেত্রে এই হরমোনের প্রভাবে বুক জ্বালাপোড়া ও কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় এবং সেখান থেকে পেট ফাঁপা লাগেএ ছাড়াও গর্ভের সন্তান বড় হতে থাকলে পরিপাক নালীর ওপর চাপ বাড়তে থাকে চাপ বাড়ার কারণে হজমের গতি কমে আসতে পারে এবং পেট ফাঁপার সম্ভাবনাও বেড়ে যায়[২]উল্লেখ্য স্বাভাবিক অবস্থায় পেট ফাঁপার কারণগুলোও এসময় আপনার পেট ফাঁপা লাগার পেছনে দায়ী থাকতে পারে যেমন ঠিকমতো চিবিয়ে চিবিয়ে খাবার না খাওয়া খাওয়ার সময়ে কথা বলার কারণে পেটে বাতাস ঢোকা এবং যেসব খাবারে গ্যাস হয় সেগুলো খাওয়াতা ছাড়া আগে থেকেই ইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম কিংবা সিলিয়াক ডিজিজের মতো হজমসংক্রান্ত রোগ থাকলে গর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপা লাগতে পারেগ্যাস নাকি প্রসববেদনা গর্ভকালের শেষের দিকে পেটের ব্যথা গ্যাস থেকে হচ্ছে না কি প্রসববেদনা শুরু হয়েছে—এ নিয়ে অনেক সময় দ্বিধা তৈরি হতে পারে দুইয়ের মধ্যে পার্থক্য করার সহজ উপায় হলো ব্যথার সময়কাল লক্ষ করা যদি ব্যথা অনিয়মিতভাবে যেকোনো সময় হয় এবং একটানা অনেকক্ষণ থাকে তাহলে সেটা পেট ফাঁপার ব্যথা অপরদিকে প্রসববেদনা কিছু সময়ের জন্য হয়ে চলে যাবে এবং নিয়মিত সময় পর পর ব্যথা হবে ব্যথার ধরন লক্ষ্য করলেও একটা ধারণা পাওয়া যায় পেট ফাঁপার ব্যথা হবে বদহজমের অনুভূতির মতো আর প্রসববেদনা মাসিকের ব্যথার মতো গর্ভকালীন সময়ে অল্প মাত্রায় পেট ফেঁপে যাওয়া সাধারণত বড় রকমের কোনো সমস্যা সৃষ্টি করে না তবে এটা কমানোর জন্য বেশ কিছু উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে—১ কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে পানি ও আঁশযুক্ত খাবার খাওয়াগর্ভাবস্থায় অনেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগে কোষ্ঠকাঠিন্য গর্ভাবস্থায় পেটে গ্যাস জমার অন্যতম কারণ[৩] কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পরিপাক নালীতে গ্যাস জমে পেট ফেঁপে যেতে পারেকোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রচুর পানি পান করা এবং আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণএকজন সুস্থ নারীর গর্ভাবস্থায় দৈনিক গড়ে ২–৩ লিটার বা ৮–১২ গ্লাস পানি পান করা উচিত বোতল অথবা স্ট্র দিয়ে পানি না খেয়ে কাপ অথবা গ্লাস দিয়ে পানি পান করবেন কারণ বোতল অথবা স্ট্র দিয়ে পেটে বেশি বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা রয়েছে পেটে বেশি বেশি বাতাস ঢোকার ফলেও পেট ফাঁপা হয়ে থাকেআঁশযুক্ত খাবার খেলে আপনি কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা কমিয়ে আনতে পারবেন এসব খাবারের মধ্যে রয়েছে সবুজ শাকসবজি মিষ্টিকুমড়া গাজর কলা ও আঙুরখাবারের তালিকায় ফাইবারের পরিমাণ আস্তে আস্তে বাড়াবেন একেবারে অনেক বেশি আঁশযুক্ত খাবার খাবেন না কারণ আঁশযুক্ত খাবার হজম হতে একটু বেশি সময় লাগে খাবার বেশি সময় ধরে পরিপাক নালীতে থাকলে পেট ফাঁপার সমস্যা হতে পারেআঁশযুক্ত খাবার খাওয়ার পাশাপাশি দিনে অন্তত ২ লিটার পানি পান করা খুব গুরুত্বপূর্ণবিশেষ তথ্য গর্ভকালীন সময়ে কিছু বাড়তি ভিটামিন ও মিনারেল (যেমন আয়রন) খাওয়ার কারণেও কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে তবে এজন্য আয়রন ট্যাবলেট সেবন বাদ দেওয়া যাবে না বরং আয়রন ট্যাবলেট সেবনের পাশাপাশি কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধানে প্রচুর পরিমাণে পানি ও শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করবেন৷ প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন২ যেসব খাবারে গ্যাস হয় সেগুলো এড়িয়ে চলাযেসব খাবারে আপনার গ্যাস হওয়ার প্রবণতা রয়েছে সেগুলো এই সময়ে না খাওয়াই উত্তম একেকজনের ক্ষেত্রে একেক ধরনের খাবার খাওয়ার পরে পেটে গ্যাস হতে পারে তাই আপনার কোন খাবারে পেট ফেঁপে যাচ্ছে সেটি নিবিড়ভাবে লক্ষ করে সেগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুনকিছু খাবার তুলনামূলকভাবে বেশি গ্যাস তৈরি করে এই তালিকায় রয়েছে—আপেল নাশপাতি আম পেঁয়াজ ফুলকপি বাঁধাকপি ও ব্রকলি বিভিন্ন ধরনের ডাল শিম মটরশুঁটি চাকফি ঝালমসলাযুক্ত খাবার গোটা শস্যজাত ও গমজাত খাবার তেলচর্বিযুক্ত খাবার যা হজম হতে বেশি সময় লাগে সরবিটল অথবা ম্যানিটল (চিনির বিকল্পে ব্যবহৃত কৃত্রিম মিষ্টি অর্থাৎ আর্টিফিশিয়াল সুইটেনার) সফট ড্রিংক যেমন পেপসি ফানটা ও কোকাকোলাআপনার যদি গর্ভধারণের আগে থেকেই দুধ পান করার কারণে পেট ফাঁপাসহ হজম সংক্রান্ত সমস্যা দেখা দেয় তাহলে গর্ভাবস্থায় দুধ পানের পরিমাণ বাড়িয়ে দিলে সমস্যাগুলোও বেড়ে যেতে পারে[৪]৩ পেটে বাতাস ঢোকা কমাতে ধীরেসুস্থে খাওয়াখুব দ্রুত খাবার খেলে খাবারের সাথে বেশি পরিমাণে বাতাস পেটে চলে যায় সেই সাথে খাবার ঠিকমতো না চিবিয়ে গিলে ফেললে তা হজম হতে বেশি সময় নেয় এবং গ্যাসও বেশি তৈরি করে এজন্য—ধীরেসুস্থে খান এতে খাবারের সাথে বাতাস গিলে ফেলার পরিমাণ কমে আসে এবং পেটে বাতাস জমে পেট ফাঁপা হওয়ার সম্ভাবনাও কিছুটা কমে যায় পানি পান করার সময়েও অল্প করে পানি মুখে নিয়ে ঢোক গিলবেন একনাগাড়ে ঢকঢক করে পানি খাবেন নামুখ বন্ধ করে খান খাবার খাওয়ার সময়ে মুখ বন্ধ করে ভালো মতো চিবিয়ে খাবেন এতে করে বাতাস গিলে ফেলার সম্ভাবনাও কমবে এবং হজমেও উপকার হতে পারে এ ছাড়া খাবার খাওয়ার সময়ে কথা বলা থেকে বিরত থাকলেও খাবারের সাথে বাতাস গিলে ফেলার পরিমাণ কমাতে পারবেনধূমপান এড়িয়ে চলুন ধূমপান করা এবং চুইংগাম চিবানোর সময়েও পেটে বেশি বাতাস ঢোকার সম্ভাবনা থাকে তাই এগুলো থেকে বিরত থাকার চেষ্টা করুন এ ছাড়া ধূমপান করলে গর্ভাবস্থায় নানান জটিলতার সম্ভাবনাও বাড়ে৪ শরীর সচল রেখে হজমে সহায়তা করাব্যায়ামের মাধ্যমে শরীরকে সচল রাখা হলে হজম প্রক্রিয়া সহজ হয় এতে পেট ফাঁপা কমে আসে এবং যতটুকু বায়ু স্বাভাবিকভাবে তৈরি হয় তা জমে না থেকে বের হয়ে যায়[৫] গর্ভাবস্থায় প্রতিদিন অল্প সময়ের জন্য হাঁটা একটি মানানসই হালকা ব্যায়াম হতে পারেপাশাপাশি খাওয়া শেষ হওয়ার সাথে সাথে বিছানায় শুয়ে না পড়ে অল্প কিছুক্ষণ হাঁটার অভ্যাস করার চেষ্টা করতে পারেন৫ একেবারে বেশি না খেয়ে অল্প অল্প করে খাওয়াআমরা সাধারণত সারাদিনে তিন বেলা খাবার খেয়ে থাকি তাই অনেকসময় একবারে বেশি খেয়ে ফেলার প্রবণতা দেখা যায় এটি এড়াতে সারাদিনের খাবারকে অল্প অল্প করে ছয়টি ভাগে ভাগ করে নিতে পারেনউল্লেখ্য এক বার খাওয়ার পর থেকে পরবর্তী খাবার খাওয়ার সময়ের ব্যবধান যেন খুব বেশি না হয়—সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে চাইলে তিন বেলা পরিমিত পরিমাণে খাওয়ার পাশাপাশি কয়েকবার হালকা নাস্তা খাওয়া যেতে পারে নাস্তা হিসেবে শসা টমেটো অথবা একটি ফল বেছে নিতে পারেনএ ছাড়া রাতের খাবার একটু আগে আগেই খেয়ে নিবেন রাতে খাওয়ার কমপক্ষে তিন ঘন্টা পরে ঘুমাতে যাওয়ার চেষ্টা করবেন এটি পেট ফাঁপাসহ হজমের সমস্যাগুলো কমাতে সাহায্য করতে পারে৬ দুশ্চিন্তামুক্ত থাকাবিভিন্ন দুশ্চিন্তা নিয়ে খাবার খাওয়ার সময়ে অস্থিরতা সৃষ্টি হতে পারে যার ফলে দ্রুত খাবার খেতে যেয়ে অতিরিক্ত বাতাস খাবারের সাথে পেটে চলে গিয়ে পেট ফাঁপার সমস্যা দেখা দিতে পারেউদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা দূর করার জন্য আপনি একটি সহজ ব্যায়াম করতে পারেন এই ব্যায়ামটি শুয়ে চেয়ারে বসে হেলান দিয়ে অথবা দাঁড়িয়ে করা যেতে পারে আপনি যদি আঁটসাঁট কাপড় পরে থাকেন তা বদলে ঢিলেঢালা কাপড় পরে নিতে পারেনব্যায়ামের শুরুতেই রিল্যাক্সড হয়ে একটি আরামদায়ক অবস্থান গ্রহণ করুন— শুয়ে থাকলে পা সোজা করে রাখুন অথবা এমনভাবে হাঁটু ভাঁজ করে নিন যাতে পায়ের পাতা বিছানার সাথে লেগে থাকে দুই হাত দুই পাশে লম্বা করে রাখুন হাতের তালু ওপরের দিকে অর্থাৎ ঘরের ছাদের দিকে মুখ করে রাখুন চেয়ারে বসে থাকলে দুই হাত দুই পাশের হাতলে রাখুন পা দুটো মেঝেতে সমান ভাবে ফেলুন দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন দাঁড়িয়ে থাকলে পা দুটো সমান ভাবে মেঝেতে ফেলুন এবং দুই পায়ের মাঝে এক কোমর সমান ফাঁকা জায়গা রাখুন এবার লম্বা করে শ্বাস নিন খুব বেশি জোর দিয়ে চেষ্টা না করে আরামদায়কভাবে পেট পর্যন্ত গভীর শ্বাস নিন প্রতিবার শ্বাস নেওয়ার সময়ে মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুনবেন তবে শুরুতেই পাঁচ পর্যন্ত গুনে লম্বা শ্বাস নিতে কষ্ট হতে পারে সেক্ষেত্রে যতটুকু সম্ভব হয় ততটুকু নিন তারপর শ্বাস ধরে না রেখে আলতো করে ছেড়ে দিন আবারও মনে মনে এক থেকে পাঁচ পর্যন্ত গুনতে চেষ্টা করতে পারেন চেষ্টা করবেন শ্বাস নেওয়ার সময়ে নাক দিয়ে শ্বাস নিতে এবং মুখ দিয়ে শ্বাস ছাড়তে নিয়মিত ব্যবধানে এভাবে শ্বাস নিতে থাকুন তিন থেকে পাঁচ মিনিট পর্যন্ত এই ব্যায়ামটি করতে পারেন৭ হজম প্রক্রিয়া সহজ করতে প্রোবায়োটিক খাবার খাওয়াঅনেক সময় হজমের সমস্যা হলে পেটে অধিক পরিমাণে গ্যাস জমা হয় প্রোবায়োটিক খাবার (যেমন দই) খেলে সেটি হজমে সাহায্য করতে পারে এতে পেট ফাঁপার সমস্যা থেকে কিছুটা স্বস্তি পাওয়া যেতে পারে[৬]৮ আদা পুদিনা অথবা লেবুযুক্ত পানীয় পান করাপেট ফাঁপার সমস্যা হলে অল্প পরিমাণে পুদিনা চা লেবুর রস মেশানো কুসুম গরম পানি অথবা আদা চা পান করতে পারেন এসব পান করলেও অনেক সময় উপকার পাওয়া যেতে পারে[৭][৮]তবে যেকোনো পানীয় পান করার সময় তাতে ক্যাফেইন আছে কি না সেটি খেয়াল রাখবেন সাধারণত চাকফি ও কোকের মতো কোমল পানীয়তে ক্যাফেইন থাকে গর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় অথবা খাবার খেলে গর্ভের শিশুর ওজন কম হওয়া এবং সময়ের আগে জন্মানোসহ নানান ধরনের জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে[৯][১০] সাধারণত ঘরোয়া উপদেশগুলো সঠিকভাবে মেনে চললে পেট ফাঁপার সমস্যা অনেকটা নিয়ন্ত্রণে চলে আসে তবে এর পরেও পেট ফাঁপা না কমলে এই লক্ষণ উপশমের ঔষধ খেতে পারেনগর্ভাবস্থায় প্রোজেস্টেরন হরমোনের প্রভাবে হজম প্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আসে মূলত একারণেই পেট ফাঁপা হয় তাই হজমের সমস্যা হলে অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট জাতীয় ঔষধ খেতে পারেনযদি অ্যান্টাসিড অথবা অ্যালজিনেট সেবনের পরেও লক্ষণের কোনো উন্নতি না হয় তাহলে এগুলোর পরিবর্তে ওমিপ্রাজল খেয়ে দেখতে পারেন[১১] যদি মনে হয় পেট ফাঁপার সমস্যা হয়তো হজমসংক্রান্ত নয় তাহলে সিমেথিকোন নামের একটি ঔষধ খেতে পারেন এটি পেট ফাঁপা উপশমে সাহায্য করতে পারেআয়রন ট্যাবলেট ও অ্যান্টাসিড একই সময়ে খাবেন না এতে আয়রনের কার্যকারিতা কমে যায় অ্যান্টাসিড খাওয়ার অন্তত ১ ঘণ্টা আগে অথবা ২ ঘণ্টা পরে আয়রন ট্যাবলেট খাবেনউল্লেখ্য অ্যান্টাসিড অ্যালজিনেট ওমিপ্রাজল ও সিমেথিকোন—এগুলো সবই ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ এই বিষয়ে আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনগর্ভাবস্থায় পেট ফাঁপার যেসব ঔষধ এড়িয়ে চলতে হবে বিসমাথ সাবস্যালিসাইলেট বাইকার্বনেট অফ সোডা অ্যাসপিরিন অ্যাক্টিভেটেড চারকোল এনেমা ও ক্যাস্টর তেল এই ঔষধগুলো গর্ভের শিশুর জন্য ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে তাই এগুলো গর্ভাবস্থায় এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়[১২]কখন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে যদি পেট ফাঁপার সমস্যা ধীরে ধীরে পেট ব্যথা পেটে টান ধরা বা খিল ধরার রূপ নেয় তখন ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত কারণ এরকম ব্যথা গর্ভকালের শুরুতে বদহজম ইনফেকশন অথবা খাদ্যে বিষক্রিয়া থেকে হতে পারে এমনকি গর্ভকালের শেষের দিকে প্রিএক্লাম্পশিয়া নামক মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা থেকেও হতে পারে আবার আপনার পেটে অস্বস্তি ভাবের কারণ আদৌ পেট ফাঁপা না কি অন্য কিছু—এই নিয়ে মনে সন্দেহ থাকলে নিজে নিজে কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার চেয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াই শ্রেয় গর্ভাবস্থায় কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা খুবই কমন গর্ভধারণের আগে আপনি এই সমস্যায় না ভুগে থাকলেও গর্ভধারণের পর আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা শুরু হতে পারে আর আপনার আগে থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে গর্ভাবস্থায় তা বেড়েও যেতে পারেগর্ভাবস্থায় কষা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা খুবই কমন গর্ভধারণের আগে আপনি এই সমস্যায় না ভুগে থাকলেও গর্ভধারণের পর আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা শুরু হতে পারে আর আপনার আগে থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে গর্ভাবস্থায় তা বেড়েও যেতে পারেতবে গর্ভকালীন সময়ে সবাই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভোগেন না গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য হলেও জীবনধারায় সহজ কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আপনি অনেকাংশেই কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধান করতে পারেন এতে আপনার গর্ভকালীন সময় কিছুটা হলেও সহজ হয়ে আসবে গর্ভধারণের একেবারে প্রথম দিকের সময় থেকেই কোষ্ঠকাঠিন্য শুরু হতে পারে অনেকেরই পুরো গর্ভকালীন সময় জুড়েই কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকতে পারে এমনকি সন্তান জন্ম দেওয়ার তিন মাস পর পর্যন্তও আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগতে পারেন[১] একবার কষা পায়খানা হলেই আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হয়ে গিয়েছে—এমনটা ভেবে দুশ্চিন্তা করবেন না সাধারণত কোষ্ঠকাঠিন্য হলে—এক সপ্তাহে তিনবারের কম পায়খানা হয় পায়খানা শুকনো ও শক্ত হয় পায়খানার দলার আকৃতি স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হয় পায়খানা করতে কষ্ট অথবা ব্যথা হয় পেট পরিষ্কার হচ্ছে না এমন মনে হয় পেট ব্যথা পেট ফাঁপা লাগা অথবা বমি বমি ভাব হয়পড়ুন গর্ভাবস্থায় পেট ব্যথাএসব লক্ষণ থাকলে দ্রুত কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা নিতে হবে কেননা দীর্ঘদিন ধরে কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে পাইলস অথবা গেজ রোগ হতে পারে গর্ভাবস্থায় শরীরে কিছু হরমোনের মাত্রা ওঠানামা করে গবেষণায় দেখা গেছে যে গর্ভকালীন সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারণে পরিপাক নালীতে খাবার তুলনামূলকভাবে বেশি সময় ধরে অবস্থান করে অর্থাৎ খাবার হজম হয়ে মল তৈরি হতে বেশি সময় লাগে যার কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায়[২]এ ছাড়াও গর্ভাবস্থার শেষের দিকে গর্ভের শিশু অনেকটা বড় হয়ে যাওয়ায় গর্ভবতী নারীদের জরায়ুও আকারে বেড়ে যায় এবং এটি পরিপাক নালীতে বাইরে থেকে চাপ দেয় ফলে গর্ভধারণের শেষের দিকে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা হতে পারে[৩]তবে হরমোনজনিত কারণ ছাড়াও আরও যেসব কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে অথবা কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা বাড়তে পারে সেগুলো হলো—পর্যাপ্ত পরিমাণে আঁশসমৃদ্ধ খাবার (যেমন ফল ও শাকসবজি) না খেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান না করলে সারাদিন শুয়েবসে থাকলে অথবা হাঁটাহাঁটি না করলে পায়খানার চাপ আসার পরেও সেটি আটকে রাখলে মানসিক চাপ আতঙ্ক ও ডিপ্রেশনে থাকলে কোনো ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হলেবিশেষ তথ্য গর্ভাবস্থায় আয়রন ট্যাবলেট সেবন করা গুরুত্বপূর্ণ তবে কখনো কখনো আয়রন ট্যাবলেট খেলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে সেক্ষেত্রে যেই ঔষধটি খেলে কষা পায়খানা হয় সেটির পরিবর্তে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে অন্য ধরনের আয়রন ট্যাবলেট খেতে হবে তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনোভাবেই আয়রন ট্যাবলেট সেবন করা বন্ধ করবেন না জীবনধারায় কিছু নিয়ম মেনে চললে সহজেই গর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা সম্ভব এ ছাড়া আপনি ইতোমধ্যে কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যায় ভুগতে থাকলে অথবা পায়খানা শক্ত হলে এসব পরামর্শ মেনে চলার চেষ্টা করবেন এতে করে ঘরে বসেই আপনি এই সমস্যা থেকে অনেকটাই মুক্তি পেতে পারেনগর্ভাবস্থায় কষা পায়খানার ঘরোয়া চিকিৎসাকষা পায়খানা নিরাময়ের প্রথম ধাপ হলো আপনার খাওয়াদাওয়া ও শরীরচর্চার অভ্যাসে সহজ কিছু পরিবর্তন আনা এজন্য—প্রতিদিনের খাবার তালিকায় ফাইবার বা আঁশসমৃদ্ধ খাবার রাখতে হবে যেমন ফলমূল শাকসবজি ডাল লাল চাল ও লাল আটার মতো গোটা শস্যদানা এগুলো পায়খানা নরম করতে এবং নিয়মিত পায়খানা করতে সাহায্য করে[৪] প্রতিদিন পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন পায়খানা নরম করার জন্য পর্যাপ্ত পরিমানে পানি পান করা খুব গুরুত্বপূর্ণ সাধারণত একজন সুস্থ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তিকে সারাদিনে কমপক্ষে দুই লিটার পানি পান করার পরামর্শ দেওয়া হয় গর্ভাবস্থায় শরীর সচল রাখা চালিয়ে যেতে হবে দৈনিক কমপক্ষে ৩০ মিনিট করে হাঁটাচলা দিয়েই শুরু করতে পারেন হাঁটাচলা খাবার থেকে মল তৈরি হয়ে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়ার প্রক্রিয়াকে সাহায্য করে এভাবে কোষ্ঠকাঠিন্য সমাধান করা যায়কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করতে প্রতিদিনের খাবার তালিকায় কীভাবে ফাইবার যোগ করবেন জেনে নিন আমাদের সহজ ৫টি টিপস— ভাত ও রুটি খাওয়ার ক্ষেত্রে সাদা চাল ও আটার পরিবর্তে লাল চাল ও লাল আটা ব্যবহার করতে পারেন এগুলোতে ফাইবারের পরিমাণ বেশি থাকে প্রতিবেলার খাবারে ডাল রাখতে পারেন ডালে যথেষ্ট পরিমাণে ফাইবার থাকে প্রতিবেলার খাবারে কয়েক ধরনের সবজি রাখার চেষ্টা করুন যেসব ফল অথবা সবজি খোসাসহ খাওয়া যায় সেগুলো খোসা না ফেলে খাওয়ার চেষ্টা করুন কারণ খোসায় উচ্চ পরিমাণে ফাইবার থাকে টমেটো আপেল ও আলুর মতো খাবারগুলো খোসাসহ খেতে পারেন তবে খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালোমতো পরিষ্কার করে ধুয়ে নিতে হবে যেকোনো ফল বা সবজি গোটা বা আস্ত খেলে ভালো ফাইবার পাওয়া যায় জুস বা ভর্তা বানিয়ে খেলে আঁশের পরিমাণ কমে যায় খাবার তালিকায় ফাইবারের পরিমাণ হুট করে না বাড়িয়ে ধীরে ধীরে বাড়াতে হবে সেই সাথে দৈনিক কমপক্ষে দুই লিটার করে পানি পান করতে হবেএসব ছাড়াও আরও কিছু পরামর্শ মেনে চলতে হবে—একসাথে অনেক বেশি খাবার না খেয়ে ছোটো ছোটো ভাগ করে বার বার খাবার খাবেন খাবার তালিকায় প্রক্রিয়াজাত খাবার (যেমন নুডুলস ও পাস্তা) সাদা চালের ভাত ও রুটি না রাখার চেষ্টা করবেন পায়খানার চাপ আসলে তা আটকে রাখবেন না প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে একটু সময় নিয়ে পায়খানা করার চেষ্টা করবেন পায়খানার সময় লো কমোড বা প্যান ব্যবহার করার চেষ্টা করবেন হাই কমোড ব্যবহার করলে পায়ের নিচে ছোটো টুল বা পিঁড়ি দিয়ে পা একটু উঁচুতে রাখবেন সম্ভব হলে হাঁটু ভাঁজ করে কোমরের চেয়ে ওপরে রাখার চেষ্টা করবেনছবি হাই কমোড ব্যবহারের ক্ষেত্রে পায়ের নিচে ছোট টুল দিয়ে পা উঁচু করে বসতে পারেনমানসিক দুশ্চিন্তা ও ডিপ্রেশন থেকে নিজেকে যথাসম্ভব দূরে রাখার চেষ্টা করবেনউপরের পরামর্শগুলোতে কাজ না হলে সঠিক নিয়ম মেনে ইসবগুলের ভুসি খেতে পারেনগর্ভাবস্থায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর করার ঔষধঘরোয়া চিকিৎসায় কোষ্ঠকাঠিন্য দূর না হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের ঔষধ খেতে পারেন যেমন ল্যাকটুলোজ সিরাপ এই ঔষধটি গর্ভের শিশুর জন্য নিরাপদ বলে ধরা হয়[৫]এসব ঔষধে কাজ না হলে ডাক্তার ঘরোয়া চিকিৎসার পাশাপাশি আরও শক্তিশালী ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেনগর্ভকালীন সময়ে বিভিন্ন ঔষধ আপনার শিশুর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে তাই এই সময়ে কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসায় ব্যবহৃত অন্যান্য ঔষধ খাওয়ার আগে ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন এ ছাড়াও কোষ্ঠকাঠিন্যের চিকিৎসার জন্য ক্যাস্টর অয়েল ও মিনারেল অয়েল খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন[৬]আরও পড়ুনগর্ভবতী মায়ের খাবার তালিকা ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার লাল চালের উপকারিতাগর্ভধারণের আগে থেকেই আপনি কোষ্ঠকাঠিন্যে ভুগলে গর্ভাবস্থার শুরু থেকেই আরও সতর্ক থাকা দরকার এসব পদ্ধতি অবলম্বন করেও কোষ্ঠকাঠিন্য না কমলে অবশ্যই ডাক্তারের কাছে যাবেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের ঔষধ খাবেন নাকখন ডাক্তারের কাছে যেতে হবে কিছু ক্ষেত্রে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা অনেক বেড়ে যেতে পারে তখন দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি নাহলে কিছু মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যখন ডাক্তারের কাছে যাওয়া জরুরি— ঘরোয়া সমাধানে অবস্থার উন্নতি না হলে অনেক সময় ধরে পেট ফাঁপা হয়ে থাকলে পায়খানার সাথে রক্তপাত হলে অথবা কালো পায়খানা হলে পায়খানা করার সময়ে অনেক ব্যথা হলে পায়ুপথের মুখে কোনো ফোলা বা গোটার মতো কিছু সৃষ্টি হলে সারাক্ষণ ক্লান্তিতে ভুগলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সাথে পেট ব্যথা ও জ্বর আসলে কোনো ঔষধ সেবনের কারণে কোষ্ঠিকাঠিন্যের সমস্যা হলে রক্তশূন্যতায় ভুগলে হঠাৎ করে কোনো কারণ ছাড়াই ওজন অনেকটা কমে গেলে এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় সুস্বাস্থ্য বজায় রাখতে নিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপে যাবেন যেকোনো স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে চিন্তিত হলে বিষয়টি আপনার ডাক্তার অথবা মিডয়াইফকে জানাবেন আজকাল আপনার প্রায়ই নির্দিষ্ট কোনো খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা জেগে উঠতে পারে গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা খুবই কমনআজকাল আপনার প্রায়ই নির্দিষ্ট কোনো খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা জেগে উঠতে পারে গর্ভাবস্থায় এই সমস্যা খুবই কমনতবে সবারই এমন সমস্যা হয় না এ ধরনের সমস্যায় ভুগলে দুশ্চিন্তার প্রয়োজন নেই এক্ষেত্রে আপনার খাওয়াদাওয়ার অভ্যাসের ছোটোখাটো কিছু পরিবর্তন আনতে পারেন এভাবে আপনি অতিরিক্ত খাওয়ার প্রবণতা প্রতিরোধ করতে পারবেন গর্ভাবস্থায় সাধারণত নির্দিষ্ট কোনো সময় থেকে কোনো খাবারের প্রতি তীব্র আকাঙ্ক্ষা/আসক্তি শুরু হয় না একেকজনের ক্ষেত্রে একেকসময় ও একেক খাবারের প্রতি এই লক্ষণ দেখা দেয় আবার কারও কারও এধরনের কোনো লক্ষণই দেখা দেয় নাবেশিরভাগ ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রথম ত্রৈমাসিকের মধ্যেই নির্দিষ্ট কোনো খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা শুরু হতে দেখা যায় এমনকি কারও কারও ক্ষেত্রে গর্ভধারণের প্রথম পাঁচ সপ্তাহের মধ্যেই এই লক্ষণ দেখা দিতে পারেপরবর্তী তিন মাস অর্থাৎ গর্ভধারণের চতুর্থ পঞ্চম ও ষষ্ঠ মাসে ধীরে ধীরে এই লক্ষণের তীব্রতা বাড়তে থাকে তবে গর্ভধারণের শেষের ত্রৈমাসিকের মধ্যে অর্থাৎ সপ্তম অষ্টম ও নবম মাসের মধ্যে নির্দিষ্ট কিছু খাওয়ার এমন তীব্র ইচ্ছা তেমন একটা থাকে না বললেই চলে গর্ভাবস্থায় যেসব খাবার খাওয়ার প্রতি তীব্র ইচ্ছা তৈরি হয় তার নির্দিষ্ট কোনো তালিকা নেই ভিন্ন ভিন্ন নারীর ক্ষেত্রে ভিন্ন ভিন্ন খাবারে এমন লক্ষণ দেখা দেয়অনেকের ভাজাপোড়া ও চিপসের মতো তেলচর্বিজাতীয় খাবার খাওয়ার প্রতি আগ্রহ বেড়ে যায় অন্যদিকে আগে অপছন্দ ছিল এমন কিছু খাবার খাওয়ার প্রতিও কারও কারও তীব্র ইচ্ছা জন্মাতে পারে আপনারও কোনো খাবার খাওয়ার প্রতি তীব্র ইচ্ছা জন্মাতে পারে তাই এসব নিয়ে অতিরিক্ত চিন্তার প্রয়োজন নেইগর্ভাবস্থায় পছন্দমতো খাবার খেতে কোনো সমস্যা নেই তবে কোনো খাবারই অতিরিক্ত খাওয়া ঠিক নয় সব ধরনের খাবার পরিমিত পরিমাণে খেতে হবে পছন্দমতো খাবার খাওয়ার পাশাপাশি খাবারের পুষ্টিগুণ সম্পর্কেও খেয়াল রাখতে হবেশুধুমাত্র একই ধরনের খাবার অথবা কম পুষ্টিসমৃদ্ধ খাবার বেশি খাওয়া যাবে না এতে মা ও গর্ভের শিশুর অপুষ্টিতে ভোগার সম্ভাবনা থাকে তা ছাড়া প্রয়োজনের অতিরিক্ত খাবার খাওয়ায় ওজন অতিরিক্ত বেড়ে গিয়ে মা ও শিশুর নানান স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারেপিকা যদি খুবই অদ্ভুত কিছু—যা খাবার নয়—এমন কিছু খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হয় (যেমন মাটি কাগজ কিংবা দেয়ালের রঙ) তাহলে সেটি পিকা নামের সমস্যার লক্ষণ হতে পারে আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা হলে এমনটি হয়[১] তাই এমন কিছু বোধ করলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে গর্ভাবস্থায় যেকোনো স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে ইচ্ছা হলে তা খেয়ে নিতে পারেন এতে কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা নেই তবে দিনশেষে যেন অতিরিক্ত খাবার খাওয়া না হয়ে যায় সেই বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবেঅন্যদিকে প্রক্রিয়াজাত বা প্রসেসড খাবার তেলচর্বিযুক্ত খাবার ভাজাপোড়া ও চিনিযুক্ত খাবার যতটা এড়িয়ে চলা যায় ততই ভালো কেননা এসব খাবার মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের ক্ষতি করতে পারে এ ছাড়াও গর্ভকালীন সময়ে কিছু খাবার (যেমন কলিজা) খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হলেও সেসব খাওয়া থেকে বিরত থাকতে হবেপড়ুন গর্ভাবস্থায় কি কি খাওয়া যাবে নাএক্ষেত্রে যেসব পরামর্শ মেনে চলতে পারেন—১ পুষ্টিমান জেনে খাবার খান কোনো খাবার খেতে তীব্র ইচ্ছা হলে তা খাওয়ার আগে খাবারের পুষ্টিমান সম্পর্কে চিন্তা করুন অপুষ্টিকর ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া থেকে যতটা সম্ভব বিরত থাকুনকোনো অপুষ্টিকর খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হলে এর বিকল্প অথবা কাছাকাছি স্বাদগন্ধের অন্য কোনো পুষ্টিকর খাবার খাওয়ার চেষ্টা করতে পারেন২ প্রতিবারে অল্প অল্প করে খাবার খান অনেকসময় কম পুষ্টিসম্পন্ন ও তেলচর্বি জাতীয় খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হতে পারে এক্ষেত্রে একবারে অনেকখানি খাবার না খেয়ে অল্প পরিমাণে কয়েক বারে ভাগ করে খেতে পারেন এতে করে অতিরিক্ত অপুষ্টিকর খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে আনতে পারবেন৩ বারবার খাওয়ার ইচ্ছা হলে মন অন্যদিকে সরানোর চেষ্টা করুন একই খাবার বারবার খেতে ইচ্ছা করলে মন অন্য দিকে সরানোর চেষ্টা করতে পারেন এজন্য হালকা ব্যায়াম করা হাঁটাহাঁটি করা কিংবা গল্প করার মতো কোনো কিছুতে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেনপড়ুন গর্ভবতীর খাবার তালিকা গর্ভাবস্থায় কোনো খাবার খাওয়ার তীব্র ইচ্ছা হওয়ার জন্য দায়ী নির্দিষ্ট কোনো কারণ সম্পর্কে এখনও জানা যায়নি তবে ধারণা করা হয় যে গর্ভাবস্থায় শারীরিক পরিবর্তনের কারণে রুচির এমন পরিবর্তন ঘটে[২] গর্ভকালীন সময়ে অতিরিক্ত পুষ্টির চাহিদা থাকার কারণেও এমনটা হতে পারেকোন ধরনের খাবারের প্রতি তীব্র ইচ্ছা জন্মাবে তার ওপরে পারিপার্শ্বিক ও সংস্কৃতির একটা প্রভাব আছে বলে কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে[৩] এ ছাড়াও কিছু গবেষণা থেকে ধারণা করা হয় যে সাধারণত গর্ভকালীন সময়ে যেসব খাবার (যেমন টক ফল) খেলে বমি বমি ভাব ও বমি হওয়ার সম্ভাবনা একটু কমে যায়—সেসব খাবার খাওয়ার প্রতি তীব্র ইচ্ছা জন্মে[৪] তবে এসবের পক্ষে এখনও জোরালো কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নি গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিকের তুলনায় প্রায় ১১৫–১৬ কেজি ওজন বেড়ে যাওয়া স্বাভাবিক একটি ঘটনা[৬] তবে গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত তেলচর্বিযুক্ত ও অস্বাস্থ্যকর খাবার খেলে অথবা খাবারের পরিমাণ পরিমিত না রাখলে ওজন অতিরিক্ত বেড়ে যেতে পারে ওজন প্রয়োজনের চেয়ে বেড়ে গেলে সেটি মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারেগর্ভাবস্থায় চিনি জাতীয় খাবার খাওয়ার ইচ্ছা হলেই যে আপনি সরাসরি গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবেন এমন কোনো তথ্য গবেষণায় পাওয়া যায়নি[৭] তবে এই জাতীয় খাবার বেশি খেলে ওজন বেড়ে যায় আর ওজন বেড়ে গেলে গর্ভকালীন জটিলতা হওয়ার সম্ভাবনাও বেড়ে যায় এসব জটিলতার মধ্যে রয়েছে—উচ্চ রক্তচাপ প্রিএক্লাম্পসিয়া গর্ভকালীন ডায়াবেটিস সিজার (সিজারিয়ান) অপারেশন করানোর প্রয়োজন হওয়া রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি হওয়া গর্ভপাত বা গর্ভের বাচ্চা নষ্ট হওয়ামায়ের পাশাপাশি গর্ভের শিশুও নানান ধরনের সমস্যায় ভুগতে পারে যেমন—নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অপরিণত (প্রিম্যাচিউর) অবস্থায় জন্মগ্রহণ করা গর্ভের শিশুর আকার অস্বাভাবিক বড় হওয়া জন্মগত ত্রুটি দেখা দেওয়া মৃত শিশু জন্ম হওয়া ভবিষ্যতে অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হওয়া রান্নাঘরে ঢোকার আগেই কি আপনি বুঝে যাচ্ছেন কী রান্না হয়েছে মাছের গন্ধে কি আপনার পেট মোচড় দিয়ে উঠছে রান্নাঘরে ঢোকার আগেই কি আপনি বুঝে যাচ্ছেন কী রান্না হয়েছে মাছের গন্ধে কি আপনার পেট মোচড় দিয়ে উঠছে গর্ভধারণ করার পরে অনেক নারীর ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়ে পড়ে[১] যেই গন্ধগুলো হয়তো আগে তেমন বোঝা যেত না কিংবা খেয়াল হতো না সেগুলোও নাকে এসে লাগে[২] ডাক্তারি ভাষায় একে হাইপারঅসমিয়া বলা হয়গর্ভধারণ করলে শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন ঘটে এবং বিভিন্ন ধরনের উপসর্গ দেখা যায় ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়ে পড়াও এমনই একটি উপসর্গ বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে নারীরা ঘ্রাণশক্তি তীব্র হয়ে ওঠার বিষয়টি লক্ষ করেন[৩][৪] আপনি এসময়ে ঘ্রাণশক্তি তীব্র হয়ে ওঠার পাশাপাশি কখনো কখনো অদ্ভুত গন্ধ পাচ্ছেন বলে মনে হতে পারে আবার কখনো কখনো কোনো উৎস ছাড়াই নাকে গন্ধ লাগতে পারেঘ্রাণশক্তির এসব পরিবর্তন গর্ভাবস্থার পরবর্তী সপ্তাহগুলোতে অনেকটাই কমে আসে[৫] আর সন্তান জন্মদানের পরে প্রায় একেবারেই চলে যায়[৬]ঘ্রাণশক্তি তীব্র হয়ে যাওয়ার ফলে গর্ভাবস্থায় আপনার মুখের স্বাদেও পরিবর্তন আসতে পারে মুখের ভেতরে টক টক কিংবা তেতো লাগতে পারে আবার কোনো খাবারই সুস্বাদু লাগছে না—এমনও হতে পারেএ ছাড়া গর্ভাবস্থায় ঘ্রাণশক্তি তীব্র মনে হওয়ার সাথে বমি বমি ভাব বেড়ে যাওয়ার একটি সম্পর্ক থাকতে পারে[৭][৮] গর্ভধারণের কারণে হওয়া বমি বমি ভাব এবং গর্ভবতী মায়েদের ঘ্রাণশক্তি বেড়ে গিয়েছে বলে মনে হওয়া—দুটোই গর্ভাবস্থার প্রথম সপ্তাহগুলোতে ঘটে গর্ভাবস্থায় বিভিন্ন জিনিসের স্বাভাবিক গন্ধও মায়েদের কাছে তীব্র মনে হতে পারে গর্ভাবস্থায় নারীদের ঘ্রাণশক্তি আক্ষরিক অর্থেই তীব্র হয়ে যাওয়ার পক্ষে তেমন জোরালো প্রমাণ পাওয়া না গেলেও অনেকেই গর্ভাবস্থায় নিজেদের ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়েছে এমন অনুভব করেন[৯]ঘ্রাণশক্তির এমন পরিবর্তনের পেছনে এখনো কোনো স্পষ্ট কারণ খুঁজে পাওয়া যায়নি তবে গর্ভকালীন হরমোনগুলোর প্রভাবে এমন পরিবর্তন হতে পারে[১০] হরমোনগুলো একদিকে আপনার ঘ্রাণশক্তির তীব্রতা বাড়িয়ে দিতে পারে আবার নির্দিষ্ট কিছু গন্ধ—যেগুলো হয়তো আগে নাকে তেমন লাগত না—সেগুলো হয়তো এখন সহজেই ধরতে পারবেন গর্ভধারণের আগে কখনোই সমস্যা হয়নি—এমন খাবারের কিংবা জিনিসের গন্ধেও গর্ভাবস্থায় নতুন করে বমি বমি লাগা শুরু হতে পারে তাই আপনার কোন ধরনের গন্ধে সমস্যা হয় সেটি খেয়াল করুন এরপর সেগুলো যতটা সম্ভব এড়িয়ে চলার চেষ্টা করুনতীব্র ঘ্রাণের অনুভূতি মোকাবেলায় কিছু সহজ ও ঘরোয়া উপায় এখানে তুলে ধরা হয়েছে—১ সুগন্ধি সামগ্রী হাতের কাছে রাখাযেসব জিনিসের ঘ্রাণ আপনার ভালো লাগে সেসব জিনিস আশেপাশে রাখার চেষ্টা করুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে লেবুর খোসার সুগন্ধ কিংবা আদার গন্ধ বমি বমি ভাব কমাতে সাহায্য করে[১১][১২]আবার কারও কারও হয়তো পুদিনা পাতা কিংবা দারুচিনির গন্ধে বমি বমি ভাব কমে আসে বলে মনে হয় তাই এগুলো দিয়েও চেষ্টা করে দেখতে পারেন২ মনোযোগ সরিয়ে নেওয়ার জন্য হাতে কিছু রাখাঘ্রাণ থেকে মনোযোগ সরিয়ে নিলে অস্বস্তি কমতে পারে মনোযোগ সরানোর জন্য চুইং গাম চিবাতে পারেন কিংবা লজেন্স চুষতে পারেন এসময়ে অন্য কিছুর কথা ভাবার চেষ্টা করুন নিজের পছন্দের কোনো গান কিংবা কবিতার কথা ভাবতে পারেনএ ছাড়া ছোটোখাটো কোনো কাজে নিজেকে ব্যস্ত রাখতে পারেন হয়তো আলমারির একটা তাক অনেকদিন ধরে গোছানো হচ্ছে না কিংবা টেবিলের ওপরে বইখাতা এলোমেলো হয়ে আছে এগুলো একটু একটু করে গোছানোর চেষ্টা করতে পারেন৩ ফ্যান ছেড়ে দেওয়া এবং জানালা খুলে দেওয়াআপনি যেখানে আছেন সেখানে বাতাস চলাচল করলে ঘ্রাণের তীব্রতা কমে আসতে পারে তাই কোনো কিছুর গন্ধে অস্বস্তি লাগা শুরু করলে ফ্যান ছেড়ে দিন ঘর থেকে গন্ধটা বের করে দিতে জানালা খুলে দিন৪ সাবান শ্যাম্পু ও সুগন্ধি পরিবর্তন করাঅনেক নারীর গর্ভাবস্থায় কিছু কিছু সাবান শ্যাম্পু্‌ সুগন্ধি এমনকি টুথপেস্টের গন্ধ খারাপ লাগে যে জিনিসে সমস্যা হচ্ছে সেটা এড়িয়ে চলুন বিকল্প হিসেবে যে পণ্যের ঘ্রাণে আপনার সমস্যা হয় না সেটি ব্যবহার করুন বাজারে এমন সাবান শ্যাম্পু ও ডিওডোরেন্ট পাওয়া যায় যাতে গন্ধ নেই সেগুলোও ব্যবহার করতে পারেন৫ রান্নার সময়ে সতর্কতাগর্ভবতী নারীদের যেসব জিনিসের গন্ধে বেশি সমস্যা হয় তার মধ্যে অন্যতম হলো খাবার[১৩]খেয়াল করুন গর্ভাবস্থায় কোন খাবারগুলোর গন্ধ আপনার কাছে খারাপ লাগছে সেগুলো রান্না করা এবং খাওয়া এড়িয়ে চলতে পারেনতবে একটি বিষয়ে বিশেষভাবে লক্ষ রাখবেন—বেছে বেছে খাবার খাওয়ার কারণে নিজেকে যেন অল্প কয়েকটি খাবারের মধ্যে সীমাবদ্ধ করে না ফেলেন এতে করে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে তাই চেষ্টা করবেন ঘ্রাণের সমস্যা হলেও সুষম ও বৈচিত্র্যময় খাবার খেতেএ ছাড়া রান্নার সময়ে জানালা খোলা রেখে ফ্যান (বৈদ্যুতিক পাখা) ব্যবহার করতে পারেন যাতে করে খাবারের গন্ধ বাতাস চলাচলের মাধ্যমে ঘর থেকে দ্রুত বের হয়ে যায় এই পরামর্শগুলো গন্ধে সংবেদনশীলতা সমাধানের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব ঠেকাতেও কার্যকর৬ গরম খাবার এড়িয়ে চলাগরম গরম খাবার থেকে সাধারণত ঘ্রাণ বেশি পাওয়া যায়[১৪] তাই গরম খাবার না খেয়ে কিছুক্ষণ ঠাণ্ডা করে খাবারটা স্বাভাবিক তাপমাত্রায় এলে খেতে পারেন এতে গন্ধ কম লাগতে পারে৭ কাছের মানুষদের সাহায্য নেওয়াআপনার যে ঘ্রাণে অস্বস্তি হয় সেটি আপনার আশেপাশের মানুষ নাও জানতে পারে তাদের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলুন তাহলে প্রয়োজনে তারা আপনাকে সাহায্য করতে পারবেযেমন ময়লার গন্ধে যদি আপনার অসুবিধা হয় তাহলে তারা ময়লা ফেলার দায়িত্ব নিতে পারে কিংবা তারা যদি এমন কোনো সুগন্ধি ব্যবহার করে যাতে আপনার অসুবিধা হচ্ছে আপনি তাদের জানালে তারা হয়তো সেটা পাল্টে ফেলতে পারেন বাড়ির ময়লাগুলো যে পাত্রে জমা করা হয় সেটি খালি করতে পরিবারের সদস্যদের অনুরোধ করতে পারেন৮ জামাকাপড় পরিচ্ছন্ন রাখাকাপড়চোপড় ময়লা হলে সেখান থেকে ঘ্রাণে অস্বস্তি হতে পারে[১৫] এমন হলে পরিষ্কার জামাকাপড় পড়ুন জামাকাপড় নিয়মিত ধুয়ে রাখতে কারও সাহায্য নিতে পারেন৯ মাস্ক ব্যবহারগন্ধযুক্ত কোনো স্থানে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে মাস্ক ব্যবহার করতে পারেন তাতে গন্ধ কিছুটা কম লাগতে পারে পাইলস একটি অতি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা মলদ্বার বা পায়খানার রাস্তার মুখ যদি ফুলে যায় এবং সেখান থেকে রক্ত পড়ে অথবা পায়খানার রাস্তা থেকে যদি কোনো মাংসপিণ্ডের মত কিছু বের হয় তখন একে বলা হয় পাইলস চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম হেমোরয়েড সাধারণভাবে বাংলায় এটি অর্শ রোগ নামেও পরিচিত পাইলস একটি অতি পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা মলদ্বার বা পায়খানার রাস্তার মুখ যদি ফুলে যায় এবং সেখান থেকে রক্ত পড়ে অথবা পায়খানার রাস্তা থেকে যদি কোনো মাংসপিণ্ডের মত কিছু বের হয় তখন একে বলা হয় পাইলস চিকিৎসা বিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম হেমোরয়েড সাধারণভাবে বাংলায় এটি অর্শ রোগ নামেও পরিচিত গর্ভাবস্থায় শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন আসে ফলে নানান রকম হরমোনের মাত্রা বাড়েকমে এসময় প্রোজেস্টেরন হরমোনের আধিক্যের কারণে শরীরের পেশি এবং রক্তনালীগুলো শিথিল বা রিল্যাক্সড অবস্থায় থাকে বৃহদান্ত্র ও মলদ্বারের পেশি এবং রক্তনালীগুলো এরূপ শিথিল থাকার কারণে গর্ভবতীর পাইলস দেখা দেয় পাইলস রোগের কিছু সাধারণ উপসর্গ রয়েছে গর্ভাবস্থায় পাইলসের ক্ষেত্রেও এসব লক্ষণ বা উপসর্গ দেখা যায়১ গর্ভাবস্থায় মলদ্বারে চুলকানিপাইলস হলে কখনো কখনো পায়খানার রাস্তায় বা এর মুখের আশেপাশে চুলকানি হতে পারে এছাড়া মলদ্বার দিয়ে মিউকাস বা শ্লেষ্মাজাতীয় পিচ্ছিল ও আঠালো পদার্থ বের হতে পারে অনেক সময় মলত্যাগ করে ফেলার পরও বারবার মনে হতে পারে যে পেট পরিষ্কার হয়নি—আবার মলত্যাগ করা প্রয়োজন২ মলদ্বারের মুখের অংশগুলো ফুলে যাওয়াপাইলসের ক্ষেত্রে মলত্যাগের পরে মলদ্বারের মুখের এক বা একাধিক অংশ ফুলে যায় কখনো নরম মাংসপিণ্ডের মতো কিছু অংশ বাইরে বের হয়ে আসে এগুলো কিছু সময় পর নিজে নিজেই ভেতরে ঢুকে যায় অনেকের ক্ষেত্রে এগুলো আঙ্গুল দিয়ে ভেতরে ঢোকানোর প্রয়োজন হতে পারে আবার কারও কারও ক্ষেত্রে পাইলস এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে আঙ্গুল দিয়েও এই মাংসপিণ্ড ভেতরে ঢোকানো যায় না৩ পায়খানার রাস্তায় ব্যথা হওয়াপাইলস রোগে সাধারণত তীব্র ব্যথা হয় না তবে যদি মলদ্বারের গোটা এমন পর্যায়ে চলে যায় যে সেগুলো আঙুল দিয়ে ঠেলেও ভেতরে ঢোকানো না যায় এবং সেগুলোতে রক্ত চলাচল বন্ধ হয়ে যায় সেক্ষেত্রে অনেক সময় তীব্র ব্যথা হতে পারে এই ব্যথা সাধারণত ১২ দিন স্থায়ী হয় ব্যথা বেশি হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে এ ছাড়া বিশেষ প্রয়োজনে ঘরোয়া উপায়ে ব্যথার চিকিৎসা করা যায়৪ পায়খানার সাথে উজ্জ্বল লাল বর্ণের রক্ত যাওয়াপাইলস হলে সাধারণত পায়খানার পরে টয়লেট পেপার ব্যবহার করলে সেখানে রক্তের ফোটা লেগে থাকতে পারে অথবা কমোডে বা প্যানের গায়ে টকটকে লাল রক্তের ছোপ দেখা যেতে পারে পাইলস হলে মলদ্বারের মুখের জায়গাটি থেকে রক্তক্ষরণ হয় এই রক্ত বেরিয়ে গিয়ে জমাট বাধার সুযোগ পায় না এ কারণে এক্ষেত্রে তাজা লাল রঙের রক্ত দেখা যায়কিন্তু যদি কোনো কারণে পায়খানার সাথে গাঢ় খয়েরী রঙের রক্ত যায় অথবা আলকাতরার মতো কালো ও নরম পায়খানা হয় তবে তা সাধারণত পাইলস এর কারণে নয় পরিপাকতন্ত্রের কোনো অংশে রক্তপাতের কারণে পায়খানার সাথে এমন গাঢ় রক্ত যেতে পারে তাই এমনটা হলে রক্তপাতের কারণ জানার জন্য দ্রুত ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে গর্ভাবস্থায় পাইলস প্রতিরোধের জন্য দৈনন্দিন জীবনে সাধারণ কিছু নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দেওয়া হয় গর্ভাবস্থায়ও এই নিয়মগুলো মেনে চললে গর্ভাবস্থায় পাইলসের হাত থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে—১ ফাইবারযুক্ত খাবার খেতে হবে পাইলসের প্রধান ও প্রথম কারণ হলো কোষ্ঠকাঠিন্য বা পায়খানা কষা হওয়া গর্ভাবস্থায় নানান শারীরিক পরিবর্তনের কারণে পায়খানা কষা হওয়ার প্রবণতা আরও বেড়ে যায় তাই এসময়ে কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে বাঁচতে বেশি বেশি আঁশ বা ফাইবারযুক্ত খাবার খতে হবে আঁশযুক্ত খাবারের মধ্যে রয়েছে—শাকসবজি ফলমূল ডাল লাল চাল ও লাল আটার তৈরি খাবারসেই সাথে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে ফাইবার পানি শোষণ করার মাধ্যমে পায়খানা নরম করে তাই ফাইবার ঠিকভাবে কাজ করতে হলে সারাদিনে অন্তত দুই লিটার পানি পান করতে হবে গর্ভবতীর খাদ্য তালিকায় কেমন খাবার থাকা উচিত সেই সম্পর্কে আরও বিস্তারিত জানতে গর্ভাবস্থায় খাদ্যাভ্যাস এই আর্টিকেলটি পড়তে পারেন২ মলত্যাগের সময় খুব জোরে চাপ দেওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে পায়খানা যাতে নরম হয় এবং সহজেই মলত্যাগ করা যায় সেই উপদেশগুলো মেনে চলতে হবে৩ পায়খানার চাপ আসলে তা আটকে রাখবেন না এতে পায়খানা আরও শক্ত হয়ে কোষ্ঠকাঠিন্য দেখা দেয় চাপ আসলে দেরি না করে বাথরুমে চলে যেতে হবে৪ দীর্ঘ সময় ধরে দাঁড়িয়ে থাকা পরিহার করার চেষ্টা করতে হবে সম্ভব হলে বসে বা আরামদায়ক ভঙ্গিতে হেলান দিয়ে কাজ করার চেষ্টা করতে হবে৫ নিয়মিত হালকা ব্যায়াম করতে হবে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত হালকা ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করলে শরীরে রক্তচলাচল ভালো থাকে এটি কোষ্ঠকাঠিন্য ও পাইলস প্রতিরোধে সহায়তা করে৬ ওজন অতিরিক্ত হলে তা কমিয়ে ফেলার চেষ্টা করতে হবে ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশী হলে পাইলস হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে তাই পাইলস প্রতিরোধে ওজন কমানোর পরামর্শ দেয়া হয় ১ ব্যথার জায়গাটি কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে রাখা যায় ছোট বাচ্চাদের গোসল করানো হয় এমন ছোট আকারের একটি পাত্রে কুসুম গরম পানি নিয়ে সেখানে বসতে পারেন দিনে ৩ বার পর্যন্ত এটি করা যায় অন্য সময়ে কোথাও বসতে গেলে একটি বালিশ ব্যবহার করে সেটার ওপর বসা যেতে পারে২ একটা প্যাকেটে কিছু বরফ নিয়ে সেটা তোয়ালে দিয়ে পেঁচিয়ে মলদ্বারের ফোলা অংশের ওপরে লাগানো যায় এতে আরাম পাওয়া যাবে৩ বিছানায় শুয়ে পা উঁচু করে রাখলে মলদ্বারে রক্ত চলাচল সহজ হবে ও ব্যথা উপশম হবে শোবার সময় পায়ের নিচে বালিশ দিতে পারেন এছাড়া খাটের পায়ার নিচে কোন কিছু দিয়ে খাটের এক পাশ উঁচু করে সেদিকে পা দেওয়া যেতে পারে৪ মলদ্বার সবসময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন ও শুকনো রাখতে হবে মলত্যাগের পর জোরে ঘষাঘষি না করে আলতোভাবে জায়গাটি পরিষ্কার করে নিতে হবে টয়লেট পেপার হালকা ভিজিয়ে তারপর সেটা দিয়ে মুছতে পারেন৫ পায়খানার সময়ে ভেতর থেকে মাংসপিণ্ড বের হয়ে আসলে জোরে চাপাচাপি না করে আলতোভাবে ঢুকিয়ে দেয়ার চেষ্টা করতে হবে এক্ষেত্রে পিচ্ছিল জেলি অথবা তেল জাতীয় কিছু আঙুলে মেখে নিয়ে তারপর চেষ্টা করলে ব্যথা কম লাগবে গর্ভাবস্থায় সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি সাদা স্রাব হওয়া স্বাভাবিক এতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই তবে কিছু ক্ষেত্রে সাদা স্রাব স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় সাধারণ অবস্থার চেয়ে বেশি সাদা স্রাব হওয়া স্বাভাবিক এতে ভয় পাওয়ার কোনো কারণ নেই তবে কিছু ক্ষেত্রে সাদা স্রাব স্বাস্থ্যঝুঁকির কারণ হতে পারেমেয়েদের যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা দিয়ে সাদা স্রাব যাওয়া একটি স্বাভাবিক ঘটনা মাসিক শুরু হওয়ার ১–২ বছর আগে থেকেই সাদা স্রাব যাওয়া শুরু হয় এবং মেনোপজ হওয়ার আগ পর্যন্ত এটি চলতে থাকেএকেক জনের ক্ষেত্রে একেক পরিমাণে স্রাব যেতে পারে আবার একই ব্যক্তির মাসের একেক সময়ে একেক পরিমাণ স্রাব যেতে পারেপড়ুন মেয়েদের সাদা স্রাবসাধারণত মাসিকের ঠিক আগে স্রাব যাওয়া বেড়ে যায় এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যাওয়াও বেশ স্বাভাবিক তবে কিছু ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক সাদা স্রাব হতে পারে এই বিষয়ে বিস্তারিত জানতে নিচের ভিডিওটি দেখুন— গর্ভাবস্থায় প্রায় সবারই সাদা স্রাবের পরিমাণ বেড়ে যায় এই বাড়তি সাদা স্রাব জীবাণুকে যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তা থেকে জরায়ুতে উঠে আসতে বাধা দেয় ফলে গর্ভের সন্তান ইনফেকশন থেকে রক্ষা পায় গর্ভাবস্থার শেষের দিকে সাদা স্রাবের পরিমাণ আরও বেড়ে যায়গর্ভাবস্থার একেবারে শেষ সপ্তাহের দিকে স্রাব জেলির মতো আঠালো হতে পারে এসময়ে স্রাবের রঙ হয় গোলাপী এই স্রাবকে ডাক্তারি ভাষায় শো বলা হয়জরায়ুমুখে থাকা আঠালো পদার্থ বা মিউকাস যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসার ফলে এই শো দেখা যায় এর মাধ্যমে বোঝা যায় যে গর্ভবতী নারীর দেহ সন্তান প্রসবের প্রস্তুতি নেওয়া শুরু করছে প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার ঠিক আগের কয়েকদিন অল্প অল্প করে এরকম শো দেখা যেতে পারে স্বাভাবিক সাদা স্রাব পাতলা স্বচ্ছ ও বর্ণহীন অথবা দুধের মতো সাদা হয় এতে কোনো দুর্গন্ধ থাকে নাতবে সাদা স্রাবের সাথে নিচের পাঁচটি লক্ষণ দেখা দিলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি—অস্বাভাবিক গন্ধ কিংবা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব সবুজ হলুদ লালচে অথবা ধূসর রঙের স্রাব যোনিপথের আশেপাশে ব্যথা অথবা চুলকানি প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা ও জ্বালাপোড়া হওয়া যৌনাঙ্গে জ্বালাপোড়া হওয়া লালচে হয়ে যাওয়া কিংবা চুলকানোএগুলো যোনিপথে ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্তক্ষরণ হওয়া একটি অন্যতম বিপদচিহ্ন এক্ষেত্রে দেরি না করে রোগীকে ডাক্তারের কাছে অথবা নিকটস্থ হাসপাতালে নিয়ে যেতে হবে গর্ভাবস্থায় মাসিকের রাস্তা দিয়ে একটু পরপর অথবা একটানা পানি ভাঙতে থাকলে রোগীকে নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যেতে হবে এটি সময়ের আগেই প্রসব শুরু হয়ে যাওয়ার লক্ষণ হতে পারেগর্ভাবস্থায় ইনফেকশনগর্ভাবস্থায় যোনিপথে ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে অস্বাভাবিক ধরনের সাদা স্রাব হতে পারে এটি অনেকের কাছে ঈস্ট ইনফেকশন নামেও পরিচিত এক্ষেত্রে নিচের লক্ষণগুলো দেখা যায়—অতিরিক্ত পরিমাণে সাদা স্রাব যাওয়া এই স্রাব দেখতে দই অথবা পনিরের মতো এবং চাকা চাকা হয় তবে সাধারণত কোনো গন্ধ থাকে না যোনিপথের আশেপাশে প্রচুর চুলকানি ও জ্বালাপোড়া হওয়া প্রস্রাব ও সহবাসের সময়ে ব্যথা কিংবা অস্বস্তি হওয়াগর্ভাবস্থায় ফাঙ্গাল ইনফেকশন হলে ভয়ের কিছু নেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত চিকিৎসা নিলে এটি সহজেই সেরে যায় এক্ষেত্রে ডাক্তার মাসিকের রাস্তায় ঢোকানোর ঔষধ বা ক্রিম দিতে পারেন সাধারণত চিকিৎসা শুরু করার ১–২ সপ্তাহের মধ্যেই এই ধরনের ফাঙ্গাল ইনফেকশন সেরে যায়সব ধরনের অ্যান্টিফাঙ্গাল ঔষধ গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য নিরাপদ নয় তাই নিজে নিজে ঔষধ কিনে চিকিৎসা শুরু করা যাবে নাসহজ কিছু উপদেশ মেনে চলার মাধ্যমে ঘরোয়াভাবেই এই ধরনের ইনফেকশন প্রতিরোধ করা যায় যেমন—সুতি কাপড়ের ঢিলেঢালা অন্তর্বাস পরা খুব টাইট বা আঁটসাঁট অন্তর্বাস ও পায়জামা না পরা যৌনাঙ্গ শুকনো ও পরিষ্কার রাখা যোনিপথে সুগন্ধি সাবানের ব্যবহার এড়িয়ে চলা যোনিপথ বা মাসিকের রাস্তার ভেতরের অংশ পরিষ্কার রাখার জন্য শরীরের নিজস্ব পদ্ধতি রয়েছে এক্ষেত্রে বাইরে থেকে আলাদা কোনো সাহায্যের প্রয়োজন হয় না বরং সুগন্ধি সাবান কিংবা অন্য কিছু দিয়ে পরিষ্কার করতে গেলে হিতে বিপরীত হয়ে যোনিপথের ইনফেকশন হতে পারে গর্ভাবস্থায় শরীর কিছুটা ফুলে যাওয়া বেশ স্বাভাবিক বিশেষ করে পা পায়ের গোড়ালি পায়ের পাতা ও আঙুল এভাবে ফুলে যেতে দেখা যায় সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই ধরনের সমস্যা বেড়ে যায় এই ঘটনাকে অনেকে সচরাচর পানি আসা বলে থাকেগর্ভাবস্থায় শরীর কিছুটা ফুলে যাওয়া বেশ স্বাভাবিক বিশেষ করে পা পায়ের গোড়ালি পায়ের পাতা ও আঙুল এভাবে ফুলে যেতে দেখা যায় সাধারণত গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই ধরনের সমস্যা বেড়ে যায় এই ঘটনাকে অনেকে সচরাচর পানি আসা বলে থাকেএমন ফুলে যাওয়ার সমস্যা ধীরে ধীরে দেখা দিলে সেটি সাধারণত মা কিংবা গর্ভের বাচ্চার জন্য তেমন ক্ষতিকর হয় না তবে এটি অস্বস্তির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেকিন্তু শরীর হঠাৎ করে ফুলে যাওয়া শঙ্কার কারণ এটি কখনো কখনো প্রিএক্লাম্পসিয়া নামক গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ জনিত জটিলতার লক্ষণ হতে পারেনিচের পাঁচটি লক্ষণের যেকোনোটি দেখা দিলে গর্ভবতী মাকে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে— হঠাৎ করেই মুখ হাত অথবা পা ফুলে যাওয়া তীব্র মাথাব্যথা হওয়া দৃষ্টিশক্তির সমস্যা হওয়া যেমন দৃষ্টিশক্তি ঘোলাটে হয়ে যাওয়া অথবা চোখে আলোর ঝলকানির মতো কিছু দেখা বুকের পাঁজরের ঠিক নিচে তীব্র ব্যথা হওয়া ওপরের যেকোনো লক্ষণের পাশাপাশি বমি হওয়া এগুলো প্রিএক্লাম্পসিয়া এর লক্ষণ হতে পারে সেক্ষেত্রে রোগীকে দ্রুত ডাক্তারের কাছে নিয়ে চিকিৎসা শুরু করতে হবে সময়মতো ব্যবস্থা না নিলে মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে গর্ভাবস্থায় শরীর সাধারণ অবস্থার তুলনায় বেশি পানি ধরে রাখে তাই শরীর ফুলে যায়সারাদিন ধরে এই বাড়তি পানি শরীরের নিচের অংশে জমা হতে থাকে বিশেষ করে আবহাওয়া উষ্ণ থাকলে কিংবা গর্ভবতী নারী অনেকক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে থাকলে এমন হতে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় মায়ের জরায়ু বড় হতে থাকে এই বাড়ন্ত জরায়ুর চাপ পায়ের রক্ত চলাচলে প্রভাব ফেলতে পারে একারণে পা পায়ের পাতা ও পায়ের গোড়ালিতে পানি জমে সেগুলো ফুলে যায়উল্লেখ্য গর্ভাবস্থায় হাত অথবা মুখ অনেক বেশি ফুলে যাওয়া আশংকাজনক এটি গর্ভাবস্থার বিপদ চিহ্নগুলোর মধ্যে অন্যতম একটি চিহ্ন এই ধরনের ফোলা গর্ভাবস্থায় স্বাভাবিক পানি আসার ফোলা থেকে ভিন্ন হাত ও মুখ আশংকাজনকভাবে ফুলে যাওয়ার লক্ষণগুলো হলো— হাত এতটাই ফুলে যাওয়া যে আঙুল ভাঁজ করতে কিংবা নিজের আংটি পরে থাকতে সমস্যা হয় মুখ এতটাই ফুলে যাওয়া যে চোখ পুরোপুরি খুলতে সমস্যা হয় মুখ ও ঠোঁট ফুলে আছে কিংবা অবশ হয়ে আছে বলে মনে হও দীর্ঘক্ষণ একটানা দাঁড়িয়ে থাকা থেকে বিরত থাকুন আরামদায়ক জুতামোজা পরুন পা ফুলে গেলে চাপ লাগতে পারে এমন ডিজাইনের জুতা এড়িয়ে চলুন বিশ্রাম নেওয়ার সময়ে যথাসম্ভব পায়ের পাতা ওপরের দিকে রাখার চেষ্টা করুন প্রয়োজনে বিশ্রামের সময়ে পায়ের নিচে বালিশ দিতে পারেন প্রচুর পানি পান করুন এটি শরীর থেকে অতিরিক্ত পানি বের করে দিতে সাহায্য করবে নিয়মিত ব্যায়াম করুন দিনের বেলা নিয়মিত হাঁটার অথবা পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম করার চেষ্টা করুনপায়ের গোড়ালির ব্যায়ামবসে কিংবা দাঁড়িয়ে—যেকোনো অবস্থাতেই পায়ের গোড়ালির ব্যায়াম করা যায় এই ব্যায়াম করলে তিনটি বিশেষ সুবিধা পাওয়া যায়—পায়ের রক্ত চলাচলকে উন্নত করে পায়ের গোড়ালি ফুলে যাওয়ার সমস্যা কমায় কাফ মাসল এ টান লাগা বা খিঁচ ধরা প্রতিরোধ করে কাফ মাসল হলো পায়ের পেছনের দিকে হাঁটুর নিচের অংশে থাকা পেশিযেভাবে ব্যায়াম করবেন— গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া খুবই পরিচিত একটি সমস্যা অধিকাংশ গর্ভবতী নারীরই এই সমস্যা দেখা দেয়[১] সাধারণত এটি তেমন গুরুতর কোনো সমস্যা নয় কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে সহজেই বমি ভাব ও বমি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভবগর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়া খুবই পরিচিত একটি সমস্যা অধিকাংশ গর্ভবতী নারীরই এই সমস্যা দেখা দেয়[১] সাধারণত এটি তেমন গুরুতর কোনো সমস্যা নয় কিছু ঘরোয়া পদ্ধতি অনুসরণ করে সহজেই বমি ভাব ও বমি নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব ও বমি করার প্রবণতাকে ইংরেজিতে মর্নিং সিকনেস বলে নামে মর্নিং বা সকাল থাকলেও আসলে দিনের যেকোনো সময়েই আপনার বমি বমি ভাব হতে পারেসাধারণত গর্ভাবস্থার একদম প্রথম দিকেই (৪ থেকে ৭ সপ্তাহের ভেতর) এই সমস্যা দেখা দেয়[২] অধিকাংশ ক্ষেত্রে ১২ থেকে ১৪ সপ্তাহের মধ্যে বমি বমি ভাব নিজে থেকেই কমে আসে[৩] তবে কারও কারও ক্ষেত্রে এই সময়ের পরেও—এমনকি পুরো গর্ভকাল জুড়ে বমি বমি ভাব অথবা বমি হতে পারেগর্ভধারণের পর পরই অনেকের বমি বমি ভাব ও বমি দেখা দেয় তাই অনেকে মনে করেন যে এটি হয়তো গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ তবে সব গর্ভবতী নারীরই বমির সমস্যা দেখা দেয় না সেটাও খুব স্বাভাবিক এ নিয়ে দুশ্চিন্তা করার কিছু নেই বমি কমানোর ঘরোয়া চিকিৎসাগর্ভাবস্থার বমি বমি ভাব অথবা বমি কমানোর জন্য কোনো সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই কারণ প্রতিটি গর্ভাবস্থাই একে অপরের থেকে আলাদা তাই একই চিকিৎসায় যে সবার সমস্যা সেরে যাবে ব্যাপারটা তেমন নয় তবে খাদ্যতালিকা ও দৈনন্দিন জীবনে সহজ কিছু পরিবর্তন এনে এই সমস্যা অনেকাংশেই নিয়ন্ত্রণ করা যায় এজন্য—১ আদা‌যুক্ত খাবার খান বিভিন্ন গবেষণায় দেখে গিয়েছে গর্ভাবস্থার বমি ভাব ও বমি কমাতে আদা কার্যকরী ভূমিকা রাখে[৪][৫] এমনকি একটি গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভকালীন বমি ভাব ও বমি উপশমে আদা একটি ঔষধের (পাইরিডক্সিন বা ভিটামিন বি৬) সমান কার্যকর[৬]আপনি কাঁচা আদা চিবিয়ে খেতে পারেন সালাদ কিংবা ছোলামাখা খাওয়ার সময়ে পেঁয়াজমরিচের সাথে আদা কুচি মিশিয়ে নিতে পারেন এ ছাড়া গরম পানিতে শুধু আদার কুচি দিয়ে আদা চা বানিয়ে খেতে পারেন২ খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে নিয়ম মেনে চলুন খাবার খাওয়ার ক্ষেত্রে কিছু সাধারণ নিয়ম আপনার বমিভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে—খালি পেটে কাজ কর্ম শুরু করলে বমি বমি ভাব হতে পারে[৭] তাই ঘুম থেকে ওঠার সাথে সাথে হালকা কিছু (যেমন কয়েকটা বিস্কুট অথবা কোনো ফল) খেয়ে নিতে পারেন ১২ ঘন্টা পর পর অল্প পরিমাণে খাবার খেতে পারেন এতে করে পেট খালি থাকার সম্ভাবনা কমে যায় অতিরিক্ত তেলচর্বি যুক্ত কিংবা খুব বেশি মশলাদার খাবার এড়িয়ে চলুন অতিরিক্ত মিষ্টি বা টক জাতীয় খাবারও কম খাওয়া ভালো সহজে হজম হয় এমন খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন কম তেল ও কম মশলাযুক্ত সহজপাচ্য খাবার আপনার বমি ভাব কমাতে দারুণ উপকারী হতে পারে যেমন ভাত টোস্ট কলা চা ও শুকনো খাবার বেশি বেশি প্রোটিন জাতীয় খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন গবেষণায় দেখা গিয়েছে প্রোটিন জাতীয় খাবার পেটে খাবারের চলাচল সহজ করে৷ ফলে বমি কমাতে এটি সাহায্য করতে পারে[৮] মাছ মাংস ডিম আর দুধের তৈরি খাবারের পাশাপাশি বাদামও প্রোটিনের ভালো একটি উৎস খাবার খাওয়ার কমপক্ষে আধাঘন্টা আগে ও পরে পানি বা পানীয় খাওয়া থেকে বিরত থাকুন অনেকসময় খাবার খাওয়ার সাথে সাথে পানি খেয়ে নিলে পেট অতিরিক্ত ভরে গিয়ে বমি হতে পারে ঠান্ডা পানি পানীয় কিংবা টক ফলের জুস অনেকসময় বমি ভাব কমাতে সহায়তা করতে পারে খাবার খাওয়ার সাথে সাথে শুয়ে বিশ্রাম নেওয়া থেকে বিরত থাকুন৷ খাওয়ার পরে কিছুক্ষণ হালকা হাঁটাহাঁটি করে নিলে খাবার ভালোভাবে হজম হয়৩ বমি ভাব উদ্রেক করে এমন জিনিস এড়িয়ে চলুন গর্ভধারণ করার পরে অনেকের ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়ে গিয়েছে বলে মনে হতে পারে[৯] আপনি যেই গন্ধগুলো হয়তো আগে তেমন বুঝতে পারতেন না কিংবা খেয়াল হতো না সেগুলোও এখন নাকে এসে লাগতে পারে[১০] গর্ভাবস্থায় ঘ্রাণশক্তি তীব্র মনে হওয়ার সাথে বমি বমি ভাব বেড়ে যাওয়ার একটি সম্পর্ক থাকতে পারে[১১][১২] তাই যেসব গন্ধে অস্বস্তি হয় সেগুলো যথাসম্ভব এড়িয়ে চলুননির্দিষ্ট কোনো খাবার পারফিউম অথবা কোনো কিছুর গন্ধ খারাপ লাগলে যতটা সম্ভব হয় সেগুলো থেকে দূরে থাকুন বদ্ধ ঘরে রান্না করলে অনেকসময় কাঁচা খাবারের গন্ধ খারাপ লাগতে পারে সেক্ষেত্রে জানালা খুলে রান্না করা যেতে পারে গরম খাবারের গন্ধ অস্বস্তিকর মনে হলে খাবার কিছুটা ঠাণ্ডা করে তারপর খেতে পারেন ময়লা ফেলার ক্ষেত্রে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাহায্য নিনবিভিন্ন গন্ধের পাশাপাশি তাপ আর্দ্রতা বদ্ধ পরিবেশ মিটমিটে আলো কিংবা বিকট শব্দ আপনার বমি ভাবকে বাড়িয়ে দিতে পারে এসবের মধ্যে যেগুলো আপনার জন্য সমস্যা তৈরি করে সেগুলো এড়িয়ে চলুন৪ বেশি বেশি পানি ও তরল খাবার খান গর্ভাবস্থায় প্রচুর পরিমাণে পানি ও তরল খাবার খাওয়া উচিত এগুলো বমি ভাব কমাতে সাহায্য করতে পারেএকজন সুস্থস্বাভাবিক গর্ভবতী নারীর প্রতিদিন গড়ে ২–৩ লিটার পানি পান করা প্রয়োজন কাপ কিংবা গ্লাসের হিসাবে আপনাকে সারাদিনে মোট ৮–১২ গ্লাস পানি পান করতে হবে তবে এই বিষয়ে কখনো যদি ডাক্তার কোনো বিশেষ পরামর্শ দিয়ে থাকেন তাহলে সেটিই অনুসরণ করবেনএ ছাড়া পানি ও তরল খাবার (যেমন ভাতের মাড় ও ওরস্যালাইন) বমির কারণে শরীর থেকে বেরিয়ে যাওয়া পানির চাহিদা পূরণেও সহায়তা করে পানিশূন্যতা এড়াতে প্রতিবার বমি করার পরে যখনই কিছু খেতে পারবেন তখনই অল্প অল্প করে বারবার তরল খাবার খেতে থাকবেন ফার্মেসি থেকে ওরস্যালাইন কিনে প্যাকেটের নির্দেশনা অনুযায়ী স্যালাইন বানিয়ে অল্প অল্প করে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৫ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন শরীর ক্লান্ত থাকলে বমি বমি লাগার প্রবণতা বেড়ে যেতে পারে তাই পর্যাপ্ত ঘুম ও বিশ্রামের ব্যাপারে খেয়াল রাখুন৬ আকুপাংচার থেরাপি অথবা আকুপ্রেশার ব্যান্ড ব্যবহার করতে পারেন আকুপ্রেশার ব্যান্ড ব্যবহার করে কব্জির একটি নির্দিষ্ট জায়গায় চাপ প্রয়োগ করা হয় আকুপাংচার থেরাপি অথবা আকুপ্রেশার ব্যান্ড ব্যবহার করে অনেকের বমি ভাব কমে আসে বলে কিছু গবেষণায় দেখা গিয়েছে[১৩] তাই আকুপাংচার করিয়ে দেখতে পারেন তবে আকুপাংচারের কার্যকারিতা এখনো নিশ্চিতভাবে প্রমাণিত নয় এ নিয়ে আরও গবেষণা করা প্রয়োজন[১৪]ছবি আকুপাংচার থেরাপিবিশেষ তথ্য বমি করার সময়ে পাকস্থলীতে থাকা এসিড বমির সাথে বেরিয়ে যায় গর্ভাবস্থায় প্রায়ই বমি হলে দাঁত বারবার এই এসিডের সংস্পর্শে আসে এতে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে ফলে আপনার দাঁত ও মাড়িতে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই প্রতিবার বমি হওয়ার সাথে সাথে পানি দিয়ে ভালো করে কুলি করে নিন এ ছাড়া বমি করার পর পরই দাঁত ব্রাশ না করে অন্তত এক ঘন্টা অপেক্ষা করুন কেননা বমির পর পর দাঁত একটু দুর্বল থাকে সাথে সাথে ব্রাশ করলে দাঁতের ক্ষতি হতে পারে সাধারণ পানির পরিবর্তে পানিতে বেকিং সোডা মিশিয়ে কুলি করলে সেটা মুখে চলে আসা অ্যাসিডকে নিষ্ক্রিয় করতে সাহায্য করতে পারে ঘরেই এই মিশ্রণ তৈরির সহজ উপায় হলো এক কাপ পানিতে এক চামচ বেকিং সোডা গুলিয়ে এই পানি দিয়ে ভালোভাবে কুলি করে নেওয়া এতে দাঁতের সুস্বাস্থ্য বজায় রাখার ক্ষেত্রে উপকার পেতে পারেন পড়ুন গর্ভাবস্থায় দাঁতের মাড়ি ফোলা ও রক্ত পড়াবমি ভাব কমানোর ঔষধঘরোয়া পরামর্শগুলো ঠিকমতো মেনে চলার পরেও বমির সমস্যা না কমলে কিছু ঔষধ খেতে পারেন গর্ভাবস্থায় বমি ভাব কমানোর জন্য ভিটামিন বি৬ বা পাইরিডক্সিন ব্যবহার করা হয় এটি গর্ভাবস্থার বমি ভাব কমাতে সাহায্য করতে পারে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা গর্ভকালীন বমি ভাব ও বমি কমাতে এই ঔষধ সেবনের পরামর্শ দেয়[১৫]ভিটামিন বি৬ একটি ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ফার্মেসি থেকে কিনে নিরাপদে সেবন করতে পারবেন এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনভিটামিনের পাশাপাশি বমি ভাব কমাতে ডাক্তার আপনাকে ডক্সিলঅ্যামিন নামের একটি ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন এই অ্যান্টিহিস্টামিন জাতীয় ঔষধটি গর্ভাবস্থার জন্য নিরাপদ বলে বিবেচনা করা হয়[১৬] এটি আলাদাভাবে সেবন করা যায় আবার পাইরিডক্সিন মেশানো অবস্থায় একত্রেও কিনতে পাওয়া যায় তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া এটা সেবন করা যাবে নাএসব ঔষধে কাজ না হলে ডাক্তার আপনাকে বমির জন্য নির্দিষ্ট কিছু ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন ফার্মেসিতে অনেক ধরনের বমির ঔষধ পাওয়া যায়৷ এগুলো সাধারণত ট্যাবলেট হিসেবে সেবনের পরামর্শ দেওয়া হয় তবে যদি সব ধরনের খাবার ও পানীয় বমি হয়ে যেতে থাকে তাহলে সাপোজিটরি অথবা ইনজেকশন হিসেবেও বমির ঔষধ দেওয়া হতে পারেউল্লেখ্য গর্ভাবস্থার জন্য সব ধরনের বমির ঔষধ নিরাপদ কি না তা নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি৷[১৭] তাই ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া কোনো ধরনের বমির ঔষধ খাওয়া উচিত নয় এতে গর্ভের শিশুর ক্ষতি হতে পারে বমির সাথে নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে দ্রুত ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন—রক্তবমি হলে প্রস্রাবের রঙ অনেক গাঢ় হলে অথবা ৮ ঘন্টার বেশি সময়ের মধ্যে প্রস্রাব না হলে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যা খাচ্ছেন কিংবা পান করছেন তার সবকিছুই বমি হয়ে গেলে শরীর প্রচণ্ড দুর্বল লাগলে মাথা ঘুরালে অথবা দাঁড়ানোর সময়ে অজ্ঞান হয়ে যাবেন এমনটা মনে হলে পেটে ব্যথা থাকলে জ্বর থাকলে মাথাব্যথা থাকলে প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা হলে ওজন কমে গেলেএগুলো পানিশূন্যতা প্রস্রাবের রাস্তায় ইনফেকশন অথবা কোনো গুরুতর রোগের লক্ষণ হতে পারে কিছু ক্ষেত্রে হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার প্রয়োজন হতে পারেডাক্তারের কাছে গেলে তিনি আপনার শারীরিক পরীক্ষা করবেন প্রেসার মেপে দেখবেন এবং কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিবেন যেমন রক্ত পরীক্ষা প্রস্রাব পরীক্ষা ও পেটের আলট্রাসনোগ্রামহাসপাতালে ভর্তি করা হলে আপনাকে শিরায় স্যালাইন দেওয়া হতে পারে সেই সাথে বমির ঔষধ ও অন্যান্য ভিটামিন আপনার শরীরে ইনজেকশন হিসেবে দেওয়া হতে পারে এমন চিকিৎসার পরে অনেকে সুস্থ বোধ করেন এবং দ্রুত বাড়ি ফিরে যেতে পারেনপড়ুন গর্ভাবস্থায় ঘন ঘন প্রস্রাবহাইপারমেসিস গ্রাভিডেরাম কিছু ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার বমি ভাব ও বমির সমস্যা একটি ভয়াবহ রূপ নিতে পারে এই মারাত্মক অবস্থাকে ডাক্তারি ভাষায় হাইপারমেসিস গ্রাভিডেরাম বলা হয় এক্ষেত্রে সারাদিনে অনেকবার বমি হয় গর্ভবতীর খাবারপানি কিছুই পেটে রাখতে পারে না প্রতি ১০০ জন গর্ভবতীর মধ্যে ৩ জনের এমন গুরুতর বমির সমস্যা দেখা দিতে পারে[১৮] এই জটিলতায় আক্রান্ত হলে আপনি পানিশূন্যতা ও অপুষ্টিতে আক্রান্ত হতে পারেন এমনকি শরীরের ওজন কমে যেতে পারে শরীরে লবণ ক্ষার ও এসিডের ভারসাম্য হারিয়ে নানান মারাত্মক স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হতে পারে এক্ষেত্রে বিশেষায়িত চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে এবং অনেক সময় হাসপাতালে ভর্তি থেকে চিকিৎসা নিতে হতে পারে পড়ুন হাইপারমেসিস গ্রাভিডেরাম নিচের ক্ষেত্রগুলোতে গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব অথবা বমি হওয়ার ঝুঁকি সাধারণের তুলনায় কিছুটা বেড়ে যেতে পারেযদি আপনার—গর্ভে যমজ অর্থাৎ দুই বা তার বেশি সন্তান থাকে আগের কোনো গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব হয়ে থাকে মোশন সিকনেস থাকে অর্থাৎ গাড়িতে চড়লে বমি বমি ভাব অথবা বমি হয় মাইগ্রেনের সমস্যা থাকে মাবোন অথবা পরিবারের অন্যদের গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাবের ইতিহাস থাকে গর্ভধারণের আগে ইস্ট্রোজেনযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি খাওয়ার ফলে বমি বমি ভাব হওয়ার ইতিহাস থাকে আপনি প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হয়ে থাকেন ওজন অতিরিক্ত বেশি (বিএমআই ৩০ এর বেশি) হয় কোনো ধরনের মানসিক চাপ অথবা দুশ্চিন্তার ভেতর দিয়ে যেতে হয় গর্ভাবস্থায় ঘ্রাণশক্তি আগের চেয়ে তীব্র হয়ে যায় গর্ভাবস্থায় শরীরে হরমোনের তারতম্য বমি বমি ভাবের অন্যতম কারণ বলে ধারণা করা হয়এ ছাড়া আরও কিছু অসুখের কারণেও বমি বমি ভাব দেখা দিতে পারে যেমন—পেটের আলসার ফুড পয়জনিং থাইরয়েডের রোগ পিত্তথলির রোগ যেমন পিত্তথলিতে পাথর হওয়া কিডনির ইনফেকশন[১৯] সঠিক চিকিৎসার অভাবে প্রস্রাবের ইনফেকশন কিডনিতে ছড়িয়ে গিয়ে বমি বমি ভাব কিংবা বমি হতে পারে গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা হওয়ার ঘটনা খুব কমন বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে এই ধরনের ব্যথা বেশী হয়ে থাকেগর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা হওয়ার ঘটনা খুব কমন বিশেষ করে গর্ভাবস্থার প্রথম দিকে এই ধরনের ব্যথা বেশী হয়ে থাকেলিগামেন্ট হলো সুতার মতো কিছু টিস্যু শরীরের বিভিন্ন হাড় ও জয়েন্ট (গিরা) লিগামেন্ট এর মাধ্যমে একে অপরের সাথে সংযুক্ত থাকেগর্ভাবস্থায় শরীরকে প্রসবের জন্য প্রস্তুত করতে প্রাকৃতিকভাবেই এসব লিগামেন্ট নরম ও ঢিলেঢালা হয়ে যায় ফলে কোমর ও কোমরের নীচের অংশের হাড়গুলোর ওপরে অতিরিক্ত চাপ পড়ে একারণে গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা হতে পারে এখানে কোমর ব্যথা কমানোর ৯টি টিপস তুলে ধরা হয়েছে—১ মেঝে থেকে কিছু তুলতে হলে আগে হাঁটু ভাঁজ করে নিন পিঠ সোজা রেখে এরপর জিনিসটি তুলুন সামনে ঝুঁকে মেঝে থেকে কোনো কিছু তোলা থেকে বিরত থাকতে হবে২ ভারী জিনিস ওঠানামা করা থেকে বিরত থাকুন৩ কোনোদিকে ঘুরতে হলে খেয়াল রাখুন যেন মেরুদণ্ড বা শিরদাঁড়ার হাড় সোজা থাকে ও মোচড় না খায় শরীরের কেবল ওপরের অংশটি না বাঁকিয়ে পুরো শরীর ঘুরিয়ে ফেলুন৪ শরীরের ওজন দুই পায়ে সমানভাবে বণ্টন করার জন্য হিল জুতা না পরে ফ্ল্যাট বা সমতল জুতা পরুন৫ কেনাকাটা করার সময়ে হাতে ব্যাগ বহন করতে হলে এমনভাবে বহন করুন যেন দুই হাতের ব্যাগের ওজনের মধ্যে ভারসাম্য থাকে৬ ঘরে অথবা অফিসে বসে কাজ করার সময়ে পিঠ সোজা রাখুন গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য বিশেষ বালিশ (ম্যাটারনিটি সাপোর্ট পিলো) ব্যবহার করতে পারেন৭ পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষের কয়েক মাস যথেষ্ট বিশ্রামের বিষয়টি নিশ্চিত করুন৮ কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করুন এ ছাড়া শরীর ম্যাসাজ বা হালকাভাবে মালিশ করতে পারেন৯ এমন জাজিম তোষক ও ম্যাট্রেস ব্যবহার করুন যা সঠিকভাবে শরীরের ভার বহন করতে পাররে প্রয়োজনে নরম জাজিমের নিচে একটি হার্ডবোর্ড রেখে সেটি কিছুটা শক্ত করার ব্যবস্থা করতে পারেনডাক্তারের নিষেধাজ্ঞা না থাকলে এই কোমর ব্যথা কমানোর জন্য প্যারাসিটামল সেবন করতে পারেন সবসময় ঔষধের সাথে থাকা কাগজে যে নির্দেশনা লেখা আছে সেটি পড়ে নিতে হবে এখানে চারটি ধাপে একটি হালকা ব্যায়ামের পদ্ধতি তুলে ধরা হয়েছে এই ব্যায়ামটি পেটের পেশিগুলোকে শক্তিশালী করে তোলে এভাবে এই ব্যায়াম গর্ভাবস্থায় কোমর ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারেধাপ ১ছবি ১ এর মতো চার হাতপায়ে ভর দিয়ে এমন একটি অবস্থান গ্রহণ করুন যেন—হাঁটু কোমর বরাবর থাকে হাতের তালু কাঁধ বরাবর থাকে আঙুলগুলো সামনের দিকে থাকে পেটের পেশি টানটান অবস্থায় থাকে পিঠ সোজা ও মেঝের সমান্তরালে থাকেধাপ ১ধাপ ২এবার ছবি ২ এর মতো করে—পেটের পেশি ভেতরের দিকে টেনে নিন এবং পিঠ ওপরের দিকে উঁচু করুন মাথা ও কোমর ধীরে ধীরে নিচের দিকে নামান কনুই নমনীয় রাখুন কনুই একেবারে সোজা ও শক্ত করে ফেলা যাবে না পিঠ কোনো কষ্ট ছাড়া স্বাভাবিকভাবে যতটুকু উঁচু করা যায় ঠিক ততটুকুই উঁচু করবেনধাপ ২ধাপ ৩কয়েক সেকেন্ড এ অবস্থানেই থাকুন এরপর ছবি ৩ এর মতো করে—ধীরে ধীরে আগের মতো অর্থাৎ ছবি ১ এর মতো অবস্থানে ফিরে আসুন পিঠকে আগের মতো সোজা ও মেঝের সমান্তরালে নিয়ে আসুন পিঠ যেন বাঁকা না হয়ে যায় অর্থাৎ নিচের দিকে ঝুঁকে না যায় সেদিকে খেয়াল রাখুনধাপ ৩ধাপ ৪ধীরে ধীরে ও নিয়মিতভাবে মোট ১০ বার ধাপ ১ থেকে ধাপ ৩ পর্যন্ত পুরো প্রক্রিয়াটি অনুসরণ করুন পিঠ ওঠানামা করার সময়ে বিশেষভাবে সতর্ক থাকুন কোমর ব্যথা অনেক বেড়ে গেলে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডাক্তার আপনাকে ফিজিওথেরাপিস্টের কাছে পাঠাতে পারেন ফিজিওথেরাপিস্ট ব্যথা কমানোর বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম দেখিয়ে দিতে পারবেনকোমর ব্যথার সাথে নিচের কোনো লক্ষণ থাকলে দেরি না করে ডাক্তার দেখাতে হবে—যেকোনো এক পা কিংবা উভয় পায়ে পায়খানার রাস্তার চারিদিকে অথবা যোনিপথে অবশ লাগা অর্থাৎ বোধ হারিয়ে ফেলা জ্বর আসা মাসিকের রাস্তা দিয়ে রক্ত যাওয়া ও প্রস্রাব করার সময়ে ব্যথা হওয়া বুকের পাঁজরের যেকোনো একপাশে কিংবা উভয় পাশেই ব্যথা হওয়াবিশেষ দ্রষ্টব্য গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাস পার হয়ে যাওয়ার পরে তীব্র কোমর ব্যথা হলে সেটি সঠিক সময়ের আগেই প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার লক্ষণ হতে পারে তাই দেরি না করে রোগীকে ডাক্তার দেখানোর ব্যবস্থা করতে হবে প্রতি ১০ জন গর্ভবতী নারীর মধ্যে ৮ জনেরই গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বা বমি হয় অথবা একসাথে দুটিই হয় এটাকে অনেক সময় মর্নিং সিকনেস বলা হয়ে থাকে যদিও এটি যে কেবল সকালেই হবে এমন কোন ব্যাপার নেইপ্রতি ১০ জন গর্ভবতী নারীর মধ্যে ৮ জনেরই গর্ভাবস্থায় বমি বমি ভাব বা বমি হয় অথবা একসাথে দুটিই হয় এটাকে অনেক সময় মর্নিং সিকনেস বলা হয়ে থাকে যদিও এটি যে কেবল সকালেই হবে এমন কোন ব্যাপার নেইবেশির ভাগ ক্ষেত্রে ১৬ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যাগুলো কমে যায় বা একেবারে চলে যায় তবে কেউ কেউ আরও বেশিদিন ধরে এই সমস্যায় ভুগতে পারেনঅনেকের এত বেশি বমি হয় যে তারা যেসব খাবার খান এমনকি যা পান করেন তাই বমি করে বের ফেলেন ফলে তাদের স্বাভাবিক জীবনযাপন মারাত্মক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় এই অতিরিক্ত বমি ভাব ও বমি হওয়াকে বলা হয় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম (Hyperemesis Gravidarum) এবং এমন হলে অনেকেরই হাসপাতালে চিকিৎসা নেওয়ার প্রয়োজন পড়েঘনঘন বমি হওয়ার কারণে পেটে একেবারেই খাবার রাখতে না পারলে ডাক্তারের সাথে বা নিকটস্থ স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে দ্রুত যোগাযোগ করুন অথবা যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাসপাতালে যান অতিরিক্ত বমি হলে পানিশূন্যতা হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় তাই দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নেওয়া প্রয়োজন গর্ভাবস্থার সাধারণ বমি ভাব বা বমির তুলনায় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম অনেক বেশি ক্ষতিকর এর উপসর্গগুলো হল –দীর্ঘ সময় ধরে তীব্র বমি ভাব ও বমি হওয়া পানিশূন্য হয়ে পড়া পানিশূন্যতার উপসর্গগুলো হল অতিরিক্ত পানি পিপাসা অনুভব করা ও ক্লান্ত বোধ করা মাথা ঘোরানো বা মাথা হালকা লাগা ঠিকমত প্রস্রাব না হওয়া গাঢ় হলুদ রঙের ও কড়া গন্ধযুক্ত প্রস্রাব হওয়া ওজন কমে যাওয়া দাঁড়িয়ে থাকা অবস্থায় রক্তচাপ কমে যাওয়াগর্ভাবস্থার সাধারণ বমি অর্থাৎ মর্নিং সিকনেসের মত এটি ১৬ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে ভালো নাও হতে পারে ২০ সপ্তাহে কিছু উপসর্গ কমলেও আপনার সন্তানের জন্ম হওয়া পর্যন্ত এই সমস্যা থেকে যেতে পারেঅতিরিক্ত বমি ভাব ও বমি হলে ডাক্তারের সাথে বা স্বাস্থ্যকেন্দ্রের স্বাস্থ্যকর্মীর সাথে যোগাযোগ করুন দ্রুত সঠিক চিকিৎসা নিলে তা আপনার পানিশূন্যতা ও ওজন কমে যাওয়া প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবেআরও কিছু সমস্যার কারণে অতিরিক্ত বমি ভাব ও বমি হতে পারে ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা করে আপনার বমির সঠিক কারণ নির্ণয় করার চেষ্টা করবেন হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম এর সঠিক কারণ কি অথবা কেন এটি কেবল কয়েকজনকে প্রভাবিত করে বাকিদের করে না তা জানা যায় নি কিছু বিশেষজ্ঞের মতে গর্ভাবস্থায় দেহে হরমোনের যে পরিবর্তন হয় তার সাথে এর সম্পর্ক রয়েছেকিছু গবেষণায় দেখা গেছে একই পরিবারের সদস্যদের মধ্যে এ রোগ হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে অর্থাৎ আপনার মা বা বোনের যদি গর্ভাবস্থায় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম হয়ে থাকে তাহলে আপনারও এই সমস্যা হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকেআগের কোন গর্ভাবস্থায় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম হয়ে থাকলে পরবর্তীতেও এটি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাই আগে থেকেই এর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম এর উপসর্গগুলো কমানোর জন্য কিছু ওষুধ আছে যা গর্ভাবস্থায় এমনকি প্রথম ১২ সপ্তাহেও ব্যবহার করা যায় এর মধ্যে রয়েছে বমির ওষুধ ভিটামিন ও স্টেরয়েড এগুলো আলাদাভাবে অথবা একসাথেও দেয়া হতে পারেআপনার জন্য সবচেয়ে উপযুক্ত ওষুধটি খুঁজে বের করার জন্য আপনার ডাক্তার আপনাকে বিভিন্ন ওষুধ দিয়ে দেখতে পারেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ফার্মেসি থেকে নিজে নিজে কোন ওষুধ খাবেন নাবমি ভাব ও বমি নিয়ন্ত্রণে না আসলে আপনাকে হাসপাতালে ভর্তি করতে হতে পারে যেন ডাক্তার আপনাকে পরীক্ষা করে আপনার ও আপনার সন্তানের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য সঠিক চিকিৎসা দিতে পারেনআপনার শিরায় সরাসরি স্যালাইন দেয়ার প্রয়োজন হতে পারে আপনার বমি যদি তীব্র হয় তাহলে বমির ওষুধও শিরা বা পেশিতে দিতে হতে পারেএকবার গর্ভাবস্থায় হাইপারএমেসিস গ্রাভিডেরাম হলে পরে কি আর হতে পারেআগে কোন গর্ভাবস্থায় হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম হলে পরের যেকোন গর্ভাবস্থায় এটি আবার হতে পারে আপনি যদি আবার গর্ভধারণের সিদ্ধান্ত নেন তাহলে আগে থেকে পরিকল্পনা করে রাখা ভালো যেন আপনি ভালোমত বিশ্রাম নিতে পারেনআগেরবার যেসব কাজ করে উপকার পেয়েছেন সেগুলো করার চেষ্টা করতে পারেন আগে থেকেই ওষুধ খেতে হবে কি না সে ব্যাপারে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন হাইপারএমেসিস এর কারণে আপনি অনেক অসুস্থ বোধ করতে পারেন কিন্তু সঠিক চিকিৎসা করা হলে এটি আপনার সন্তানের তেমন কোন ক্ষতি করে না তবে এর কারণে গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন কমে গেলে জন্মের সময় আপনার সন্তানের ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে কম হতে পারে বমি অথবা বমি ভাব ছাড়া হাইপারএমেসিস গ্রাভিডেরামের আরও কিছু উপসর্গ দেখা যেতে পারে যেমনগন্ধ বা ঘ্রাণের অনুভূতি অনেক বেড়ে যাওয়া অতিরিক্ত লালা তৈরী হওয়া ও পানিশূন্যতার কারণে মাথাব্যথা ও কোষ্ঠকাঠিন্য হওয়া অনেকেরই বমির সাথে এই উপসর্গগুলো থাকে হাইপারএমেসিস ভালো হয়ে গেলে বা সন্তানের জন্মের পর এগুলো এমনিতেই চলে যাবেএই সময়ে আপনি কেমন অনুভব করতে পারেন এই অতিরিক্ত বমি ভাব ও বমি আপনার জীবনকে এমন এক সময় প্রভাবিত করে যখন আপনি আপনার অনাগত সন্তানের অপেক্ষায় আছেনতাই এই সমস্যা আপনাকে শারীরিক ও মানসিকভাবে প্রভাবিত করতে পারে এসব উপসর্গের সাথে পেরে ওঠা অনেক সময় কষ্টকর মনে হতে হয় চিকিৎসা না করলে হাইপারএমেসিস থেকে মানসিক অবসাদ খাদ্যনালী ছিঁড়ে যাওয়ার মত অনেক রকম জটিলতা দেখা দিতে পারে এরকম তীব্র বমির কারণে আপনার দৈনন্দিন কাজ যেমন অফিসে যাওয়া এমনকি বিছানা থেকে ওঠাও কঠিন হয়ে পড়তে পারেঅত্যন্ত অসুস্থতা ও ক্লান্তি ছাড়া আপনার আরও কিছু সমস্যা হতে পারে যেমন রাস্তায় বমি করতে হবে এ কথা চিন্তা করেই বাইরে বা বাসা থেকে বেশি দূরে যেতে চিন্তিত বোধ করতে পারেন আপনি ঠিক কেমন অনুভব করছেন তা কেউ বুঝতে পারবে না মনে করে নিজেকে একা বোধ করতে পারেন কেন আপনার সাথেই এমন হচ্ছে তা ভেবে বিভ্রান্ত বা বিষণ্ণ বোধ করতে পারেন এভাবে চলতে থাকলে গর্ভাবস্থার বাকি সময়টুকু কিভাবে কাটবে তা নিয়ে অনিশ্চিত বোধ করতে পারেনআপনি যেমনই অনুভব করুন কখনোই এ অনুভূতিগুলো চেপে রাখবেন না আপনার ডাক্তারের সাথে এ ব্যাপারে কথা বলুন আপনার কেমন লাগছে ও এ রোগ আপনার জীবনকে কীভাবে প্রভাবিত করছে তা বলুন আপনি চাইলে আপনার স্বামী পরিবার ও বন্ধুদের সাথেও এ ব্যাপারে কথা বলতে পারেন এছাড়া হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম হয়েছে এমন কারো সাথে কথা বলার সুযোগ হলে তার সাথেও কথা বলতে পারেনমনে রাখবেন গর্ভাবস্থার সাধারণ বমির চেয়ে হাইপারএমেসিস গ্র্যাভিডেরাম অনেক বিপজ্জনক আপনার কোন কাজের কারণে এমন হচ্ছে অথবা কিছু না করার কারণে এমন হচ্ছে এমন কোন ব্যাপার নয় আর এর জন্য আপনার অবশ্যই চিকিৎসা প্রয়োজন হাইপারএমেসিস এর কারণে পানিশূন্যতা হয় তাই রক্ত জমাট বেঁধে যাওয়ার প্রবণতা (ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস) বেড়ে যায় যদিও এই ঘটনা খুবই বিরল সন্তান জন্মদানের পর পর মায়েরা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে খুব কমই ভাবেন কিন্তু প্রসব পরবর্তী জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে সচেতন থাকা খুবই জরুরি সন্তান জন্মদানের পর পর মায়েরা জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে খুব কমই ভাবেন কিন্তু প্রসব পরবর্তী জন্মনিয়ন্ত্রণ নিয়ে সচেতন থাকা খুবই জরুরি একটি সন্তান জন্মদানের পর আরেকবার গর্ভধারণের জন্য কিছুটা সময় অপেক্ষা করা প্রয়োজন বিশেষজ্ঞরা দুটি সন্তানের মাঝে কমপক্ষে ১৮ থেকে ২৪ মাসের বিরতির পরামর্শ দেনপ্রসবের পর ১৮ মাসের কম বিরতিতে পুনরায় গর্ভধারণ করলে তা মা ও শিশুর উভয়ের জন্যই জটিলতা তৈরি করতে পারে বলে গবেষণায় প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে[১][২][৩] এমনকি অকাল গর্ভপাত/মিসক্যারেজ কিংবা এবোরশন হয়ে থাকলেও পুনরায় গর্ভধারণের চেষ্টা করার আগে কমপক্ষে ৬ মাস অপেক্ষা করতে বলা হয়েছে[৪] অনেক মা মনে করেন ডেলিভারির কয়েক মাস বা সপ্তাহের মধ্যে গর্ভধারণের ঝুঁকি কম থাকে তবে এটি পুরোপুরি সঠিক নয় অনেকে আবার মনে করেন প্রসবের পর পিরিয়ড শুরু না হলে পুনরায় গর্ভধারণ হয় না কিন্তু গর্ভধারণের জন্য পিরিয়ড ফিরে আসা জরুরি নয়আপনার দেহ সাধারণত পিরিয়ড শুরু হওয়ার দুই সপ্তাহ আগেই ডিম্বাণু নিঃসরণ করে একে ডাক্তারি ভাষায় ওভুলেশন বলে তাই পিরিয়ড শুরু হওয়ার আগেও আপনি গর্ভধারণ করতে পারেন[৫][৬]যদি আপনি সন্তানকে বুকের দুধ না খাওয়ান কিংবা বুকের দুধের পাশাপাশি ফর্মুলা খাইয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে ডেলিভারির এক মাসের মধ্যেই ওভুলেশন হতে পারে এবং প্রসবের ৬ সপ্তাহের মধ্যেই আপনি পুনরায় মা হতে পারেন[৭]তাই অপরিকল্পিত গর্ভধারণ এড়িয়ে চলতে প্রসবপরবর্তী সহবাসের ক্ষেত্রে শুরু থেকেই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি প্রয়োজনসন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সাথে গর্ভধারণের সম্পর্কঅনেক মা মনে করেন সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ালে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির প্রয়োজন হয় না বিষয়টি সঠিক নয় বুকের দুধ খাওয়ালে ওভুলেশন কিছুটা দেরিতে হলেও জন্মবিরতিতে এটি পুরোপুরি কার্যকর নয়নিচের তিনটি ক্ষেত্রে বুকের দুধ খাওয়ানো হলে পুনরায় গর্ভধারণের ঝুঁকি কম থাকে—আপনার পিরিয়ড যদি পুনরায় শুরু না হয় আপনি যদি সন্তানকে শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ান বা এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং করেন অর্থাৎ ফর্মুলা বা অন্য কোনো ধরনের বাড়তি খাবার না দেন আপনার শিশুর বয়স যদি ৬ মাসের কম হয়তারপরও অপরিকল্পিত গর্ভধারণের ঝুঁকি এড়াতে বুকের দুধ খাওয়ানোর পাশাপাশি যেকোনো একটি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করাটা নিরাপদ প্রসবের পর সহবাস শুরুর আগেই জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে পরিকল্পনা করে নিন এমনকি আপনার গর্ভাবস্থার সময়েও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি নিয়ে কথা বলে রাখতে পারেন অধিকাংশ মা গর্ভাবস্থার শেষে অথবা প্রসবের পর পর এটি নিয়ে আলোচনা করেনযদি হাসপাতালে আপনার ডেলিভারি হয় তাহলে হাসপাতাল থেকে বের হবার আগেই আপনার চিকিৎসকের সাথে এটি নিয়ে আলোচনা করে নিনএ ছাড়াও ডেলিভারির পরবর্তী চেকআপ এর সময়ই চিকিৎসক আপনাকে এ নিয়ে জিজ্ঞেস করবে সাধারণত প্রসবের ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পর এ চেকআপটি হয়ে থাকে তবে আপনি অন্য যেকোনো সময়ই এ নিয়ে আলোচনা করতে পারবেনডেলিভারির পর যত দ্রুত সম্ভব এ নিয়ে আলোচনা করে নিন আলোচনার সময় নিচের বিষয়গুলির দিকে লক্ষ্য রাখুন—আপনার পূর্ববর্তী গর্ভাবস্থার অভিজ্ঞতা আপনার ভবিষ্যৎ পরিবার পরিকল্পনা আপনার ও আপনার সঙ্গীর পছন্দ অপছন্দ ও স্বাচ্ছন্দ্য পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আপনাদের কোনো শারীরিক সমস্যা অথবা রোগ যদি থেকে থাকে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি কখন থেকে শুরু করবেন সেটি নির্ভর করবে ব্যবহৃত পদ্ধতি আপনার স্বাচ্ছন্দ্য দৈনন্দিন জীবন এবং শারীরিক অবস্থার উপরদীর্ঘমেয়াদি পদ্ধতিগুলো সন্তান জন্মদানের পর পর ব্যবহার করতে পারেন আবার কিছু পদ্ধতি (যেমন কম্বাইন্ড জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি) ব্যবহার এর জন্য অন্তত ৬ সপ্তাহ অপেক্ষা করুন বিভিন্ন ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি রয়েছে যেগুলো আপনি ডেলিভারির পর ব্যবহার করতে পারেন—ব্যারিয়ার মেথড পুরুষ ও মহিলা কনডম স্পার্মিসাইড ডায়াফ্রাম সারভাইকাল ক্যাপ স্পঞ্জ জন্মনিয়ন্ত্রণ বড়ি মিশ্র বড়ি প্রজেস্টোরন বড়ি বা মিনিপিল মিশ্র বড়ি সাধারণত সুখী নামে পাওয়া যায়[৮] আর সরকারিভাবে সরবরাহ করা প্রজেস্টোরন বড়ি আপন নামে পাওয়া যায়৷[৯] জরায়ুতে পরার ইন্ট্রা ইউটেরাইন ডিভাইস হরমোনের তৈরি বা কপারের তৈরিইমপ্ল্যান্টইনজেকশন ডিপো প্রোভেরা স্টেরিলাইজেশন বা স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি পুরুষদের ভ্যাসেকটমি নারীদের টিউবাল লাইগেশন প্রাকৃতিক পদ্ধতি ল্যাকটেশনাল এমেনোরিয়াউপরের সবগুলো পদ্ধতিই আপনি ডেলিভারির পর ব্যবহার করতে পারবেন তবে প্রত্যেকটি পদ্ধতিরই আলাদা কার্যকারিতা ও ব্যবহারবিধি রয়েছেসন্তান জন্মদানের পর কি ইমারজেন্সি জন্মনিরোধক পিল খাওয়া যাবেআপনার যদি সন্তান জন্মদানের পর ইমারজেন্সি জন্মনিয়ন্ত্রণ এর প্রয়োজন হয় আপনি নিচের পদ্ধতি গুলো অবলম্বন করতে পারেন—ইমারজেন্সি পিল লেভোনোগ্যাস্ট্রল (LNGECP) নামের একটি পিল গ্রহণ করতে পারেন এটিকে অনেকসময় মর্নিং আফটার পিলও বলা হয় এ ধরনের আরেকটি পিল হলো ইউলিপ্রোস্টাল এসিটেট (UPA) পিল সন্তানকে বুকের দুধ পান করালে এ পিল খাওয়া থেকে বিরত থাকুনজরায়ুতে পরার কপার ডিভাইস আপনি যদি আনপ্রোটেক্টেড বা নিয়ন্ত্রণবিহীন সহবাস করে থাকেন সেক্ষেত্রে ৫ দিনের মধ্যে এটি ব্যবহার করতে পারেন[১০] এটি আপনাকে ভবিষ্যৎেও জন্মনিয়ন্ত্রণে সহায়তা করবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বাছাইয়ের আগে নিচের বিষয়গুলো বিবেচনায় রাখুন—[১১]সন্তান আপনি আর সন্তান চান কি না চাইলে কতদিন পর চান আপনি যদি আর সন্তান না চান সেক্ষেত্রে স্থায়ী জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বন করতে পারেন সময় কিছু পদ্ধতি সন্তান প্রসব এর পর পরই শুরু করতে হয় কিছু পদ্ধতি শুরু করতে আপনাকে কিছুদিন অপেক্ষা করতে হয় কাজেই আপনার পছন্দের সময় অনুযায়ী আপনি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন বুকের দুধ খাওয়ানো আপনি বাচ্চাকে বুকের দুধপান করালে সব ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আপনার জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে কোনো কোনো পদ্ধতি আপনার বুকের দুধের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে কার্যকারিতা আপনি গর্ভাবস্থার আগে ব্যবহার করেছেন এমন অনেক পদ্ধতিই এখন কার্যকর নাও হতে পারে যেমন স্পঞ্জ পদ্ধতি জরায়ুমুখের ক্যাপ পদ্ধতি পুনরাবৃত্তি একটি পদ্ধতি আপনি কতবার পর্যন্ত ব্যবহার করতে চান সেটিও একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় যেমন কিছু পদ্ধতি আপনাকে প্রতিদিন ব্যবহার করতে হবে আবার কিছু কিছু পদ্ধতি একবার ব্যবহার আপনাকে মাস কিংবা বছর পর্যন্ত সুরক্ষা দিবে যৌনবাহিত রোগ আপনার অথবা আপনার সঙ্গীর যৌনবাহিত রোগ থেকে থাকলে সেটিও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি বাছাইয়ের ক্ষেত্রে বিবেচ্য বিষয় যেমন আপনার সঙ্গী যদি কনডম ব্যবহার করে তা পরস্পর থেকে যৌনবাহিত রোগ সংক্রামণের ঝুঁকি কমায়[১২] অন্যান্য রোগ সব ধরনের জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি আপনার জন্য নিরাপদ নাও হতে পারে উদাহরণস্বরূপ আপনার যদি কোনো শারীরিক অবস্থা (যেমন উচ্চ রক্তচাপ) থাকে তাহলে কিছু কিছু পদ্ধতি এড়িয়ে চলুন ওভার দা কাউন্টার কি না কিছু কিছু পদ্ধতি আপনি নিজেই প্যাকেটের গায়ে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী ব্যবহার করতে পারেন যেমন কনডম স্পার্মিসাইড স্পঞ্জ পদ্ধতি তবে কিছু কিছু পদ্ধতি অবলম্বনের জন্য আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ বা নিবিড় তত্বাবধানে থাকতে হতে পারে কেনো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি অবলম্বনের সময় আপনার নিচের লক্ষণগুলির কোনোটি দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন—এক পা বা উভয় পা ফুলে গেলে শ্বাসকষ্ট হলে বুকে ব্যথা হলে পায়ে স্পর্শ করার সাথে সাথে ব্যথা হলেএ ছাড়াও কিছু পদ্ধতি ব্যবহারের সময় সাবধানতা অবলম্বন করুন এসব পদ্ধতির যেকোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা গেলেও চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোনইন্ট্রাইউটেরিয়ান ডিভাইস ব্যবহার এর ক্ষেত্রেডিভাইসটি বের হয়ে আসলে তীব্র ধারালো পেট ব্যথা হলে প্রস্রাবের সময় রক্ত পরলে দুর্গন্ধযুক্ত যোনিস্রাব হলে সহবাসের সময় ব্যথা হলে ডিভাইসের লম্বা সুতার মতো অংশটি অনুভব করতে না পারলেপিল মিনিপিল প্যাচ রিং বা ইমপ্ল্যান্ট এর ক্ষেত্রেদীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথা হলে যা সময়ের সাথে সেরে যায় না দীর্ঘস্থায়ী বমি হলে দুই পিরিয়ডের মধ্যবর্তী সময়েও যোনিপথে ছোপ ছোপ রক্তপাত হলে বেশ কিছু কারণেই সন্তান জন্মদানের পর স্বাভাবিক দাম্পত্য সম্পর্কে ফিরতে নতুন মাবাবা কিছুটা সময় নেন বেশিরভাগ সময়ই সন্তান জন্মদানের পর পরই নবজাতককে নিয়ে ব্যস্ততার কারণেই হয়তো আপনার মনে সহবাস নিয়ে তেমন চিন্তা আসে নাবেশ কিছু কারণেই সন্তান জন্মদানের পর স্বাভাবিক দাম্পত্য সম্পর্কে ফিরতে নতুন মাবাবা কিছুটা সময় নেন বেশিরভাগ সময়ই সন্তান জন্মদানের পর পরই নবজাতককে নিয়ে ব্যস্ততার কারণেই হয়তো আপনার মনে সহবাস নিয়ে তেমন চিন্তা আসে নাতবে এসময় আপনার সঙ্গীর সাথে অন্তরঙ্গ হওয়ার বিষয়েও কিছুটা পরিকল্পনা করা উচিত নয়তো পরবর্তীতে কষ্টদায়ক ও আনন্দহীন সহবাস আপনার ও আপনার সঙ্গীর মাঝে সমস্যা তৈরি করতে পারে সন্তান জন্মদানের পর ঠিক কখন থেকে সহবাস করতে হবে এর কোনো ধরা বাঁধা নিয়ম নেই তবে সাধারণত ডেলিভারির পর ৬ সপ্তাহ পর্যন্ত সহবাস থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়[১] অধিকাংশ দম্পতি ডেলিভারির আট সপ্তাহের মধ্যে পুনরায় সহবাস শুরু করেন[২] তবে আপনি চাইলে চার থেকে ছয় সপ্তাহ পর পরই সহবাস শুরু করতে পারেনসন্তান জন্মদানের পর কখন আপনি মনে করবেন আপনি সহবাসের জন্য তৈরি এটি অনেকটাই আপনার উপর নির্ভর করছে সদ্য নবজাতকের যত্ন নিয়ে আপনার ক্লান্তিবোধ হতে পারে ক্লান্তির ফলে অনেকসময় সহবাসের ইচ্ছে আসে না আর এক্ষেত্রে আপনার শরীর গর্ভধারণ ও ডেলিভারিজনিত পরিবর্তন থেকে সেরে ওঠা পর্যন্ত অপেক্ষা করুন প্রথমবার সন্তান জন্মদানের তিনমাস পর্যন্ত সহবাস করতে গেলে আপনার বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে[৩] তবে সময়ের সাথে সাথে সব ঠিকও হয়ে যায় প্রায় ছয় মাসের মধ্যেই সব সমস্যা অনেকটাই কমে যায় ডেলিভারির পর পর সহবাস করতে গেলে যেসব সমস্যার সম্মুখীন হতে পারেন—১ যোনিপথ বা যৌনাঙ্গ শুষ্ক হয়ে যাওয়াডেলিভারির পর হরমোনের তারতম্যের কারণে আপনার যৌনাঙ্গ বা যোনিপথ বেশ শুষ্ক অনুভূত হতে পারে যোনিপথ বা যৌনাঙ্গ শুষ্ক হয়ে যাওয়ায় সহবাসের সময় আপনার ব্যথা হতে পারে বিশেষ করে যেসব মায়েরা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান তাদের ক্ষেত্রে এ সমস্যাটি বেশি হতে পারে[৪][৫] কারণ তাদের ক্ষেত্রে মেয়েদের সেক্স হরমোন ইস্ট্রোজেনের পরিমাণ অনেক কমে যায় এ ইস্ট্রোজেন হরমোনই যোনিপথের প্রাকৃতিক লুব্রিকেন্ট নির্গত করতে কাজ করে[৬]২ যোনিপথের ত্বক পাতলা হয়ে যাওয়াসিজারিয়ান সেকশনের ফলে এবং হরমোনাল কারণে আপনার যোনিপথের ত্বক পাতলা হয়ে যেতে পারে এর ফলে সহবাসের সময় আপনার যোনিপথ ছিঁড়ে যাওয়ার প্রবণতা হতে পারে৩ যোনিপথের পেশীর স্থিতিস্থাপকতা কমে যাওয়াআপনার যদি নরমাল অর্থাৎ ভ্যাজাইনাল ডেলিভারি হয় সেক্ষেত্রে আপনার ডেলিভারির সময় যোনিপথের পেশিগুলো অনেক প্রসারিত হয়ে যায় এসব পেশির স্থিতিস্থাপকতা কমে আসে এতে করেও আপনার সহবাসের সময় অস্বস্তি হতে পারে৪ দুর্বল লাগা ও যৌন ইচ্ছা কমে যাওয়াসন্তান জন্মদানের পর নবজাতকের যত্ন করতে গিয়ে অনেক মা সঠিকভাবে ঘুমানো এবং বিশ্রামের সুযোগ পান না এতে করে ক্লান্তি থেকে আপনার দুর্বল লাগতে পারে এবং এটি আপনার যৌন ইচ্ছাকেও প্রভাবিত করতে পারে৫ এপিসিওটমি ও সিজারের ফলে কাটাছেঁড়া থেকে ব্যথা হওয়াআপনার এপিসিওটমি অথবা সিজারিয়ান সেকশন করা হলে ক্ষতস্থানের ব্যথার কারণে সহবাসের প্রতি ভীতি তৈরি হতে পারে আবার নরমাল ডেলিভারি হলে আপনার যৌনাঙ্গ ও যোনিপথে ক্ষত থাকতে পারে এটিও আপনার সহবাসকে প্রভাবিত করতে পারে[৭]৬ পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনসন্তান জন্মদানের পর আপনার শরীরে বেশ কিছু পরিবর্তন হয় ডেলিভারির পর পরই গর্ভাবস্থার আগের সময়ের মতো শারীরিক গঠন পুরোপুরি ফিরে আসেনা এমনকি ফিরে আসলেও সেটি বেশ সময়সাপেক্ষ ব্যাপার অনেক মা মনে করে থাকেন তার সঙ্গীর হয়তো তাকে আর আকর্ষণীয় মনে হচ্ছে না এর ফলে অনেকে পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনে ভুগেন এটিও আপনার সহবাসকে প্রভাবিত করতে পারেআপনার পোস্ট পার্টাম ডিপ্রেশনের কারণে নিচের লক্ষণগুলো দেখা গেলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন— ভয়াবহ মুড সুইং খাবারে অরুচি অনেক বেশি ক্লান্তি নিজের বা সন্তানের ক্ষতি করার চিন্তা ও প্রবণতা ডেলিভারির পর সহবাস করার সময় আপনার যে বিষয়টি নিয়ে না ভাবলেই নয় সেটি হলো জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিসন্তান জন্মদানের পর পরই আপনি পুনরায় গর্ভধারণ করে ফেলতে পারেন এক্ষেত্রে দুই সন্তানের মাঝের বিরতি ১৮ মাসের কম বা ৫৯ মাসের বেশি হলে আপনার গর্ভধারণজনিত বিভিন্ন সমস্যা হতে পারে[৮] তাই বিশেষজ্ঞ মতে একবার প্রসবের পর পুনরায় গর্ভধারণের আগে কমপক্ষে ১৮ মাস অপেক্ষা করা উচিত[৯]কাজেই দুই সন্তানের মাঝে কমপক্ষে ১৮ মাস সময় নিন এবং সন্তান জন্মদানের পর প্রতিবার সহবাসের সময় যেকোনো একটি জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার করুনপড়ুন ডেলিভারির পর জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি পারস্পরিক বোঝাপড়া এবং সহজ কিছু উপায় অবলম্বন করে ডেলিভারির পর পর নতুন করে সহবাস আপনার ও আপনার সঙ্গীর জন্য আনন্দদায়ক করতে পারেন এজন্য নিচের পরামর্শগুলো অবলম্বন করুন—১ ধীরে ধীরে এগোন সন্তান জন্মদানের সাথে সাথেই আপনার শরীর আবার আগের মতো হয়ে উঠে না কাজেই সময় নিন সহবাসের আগে অন্তরঙ্গভাবে সময় কাটান একে অপরকে স্পর্শ করুন২ ফোরপ্লে বাড়ান কৃত্রিম কিছু ব্যবহারের আগে আপনার নিজের শরীরকে প্রাকৃতিক লুব্রিকেন্ট তৈরি করতে দিন ফোর প্লে করুন৩ লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করুন ডেলিভারির পর কিছুদিনের মধ্যেই আপনার শরীরের হরমোন আবার আগের অবস্থায় ফিরে আসে তারপরও লুব্রিকেন্ট কিছুটা সাহায্য করতে পারে এক্ষেত্রে তেল ভিত্তিক লুব্রিকেন্ট এড়িয়ে চলুন এটি কনডমের ক্ষতি করতে পারে[১০] এর পাশাপাশি এটি যৌনাঙ্গর সংবেদনশীল জায়গায় অস্বস্তি তৈরি করতে পারে এসময় পানিজাতীয় বা ওয়াটার বেইসড লুব্রিকেন্ট ব্যবহার করতে পারেন[১১]৪ নিজেদের জন্য সময় বের করুন সন্তানের যত্ন নিতে গিয়ে হয়তো আপনারা নিজেদের জন্য সময় করতে পারেন না এক্ষেত্রে নিজেদের জন্য একান্ত সময় বের করুন যেমন বাচ্চা যখন ঘুমিয়ে পড়ে বা ঘুমানো শুরু করে সেসময় নিজেদের সময় দিন এসময় তাড়াহুড়ো থেকে বিরত থাকুন৫ আপনার সঙ্গীর সাথে কথা বলুন সহবাস নিয়ে আপনার কোনো সমস্যা হলে প্রথমেই সঙ্গীর সাথে খোলামেলা কথা বলুন আপনি কেমন বোধ করছেন কেমন বোধ করছেন না—সবটাই বলুন পাশাপাশি আপনি যেন কোনো ধরনের ব্যথা না পান সেদিকেও লক্ষ রাখুন৬ পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম করুন পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম আপনার যোনিপথের মাংসপেশির টোন বা স্থিতিস্থাপকতা আবার আগের মতো করতে সহায়তা করে পাশাপাশি আপনার সেরে উঠতেও সাহায্য করে তাই আপনার চিকিৎসক আপনাকে পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়ামের পরামর্শ দিলে ব্যায়াম করুন৭ প্রয়োজনে ব্যথার ঔষধ ব্যবহার করুন সহবাসের সময় অস্বস্তি বা ব্যথা এড়াতে শুরুতেই প্রস্রাব করে নিন সহবাসের আগে গরম পানিতে গোসলও করে নিতে পারেন এ ছাড়াও যোনিপথে ব্যথা হলে নাপা বা প্যারাসিটামল জাতীয় ঔষধ ব্যবহার করতে পারেন সহবাসের পর অনেকের যোনিপথে জ্বালাপোড়া হতে পারে আপনার যোনিপথ বা যৌনাঙ্গে জ্বালা হলে বরফ বা ঠান্ডা কিছুর সেঁক নিতে পারেন৮ নিজের যত্ন নিন সন্তানের যত্ন নেওয়া বেশ ক্লান্তিকর একটা কাজ কাজেই এসময় সন্তানের পাশাপাশি নিজেরও যত্ন নিন এসময় আপনিও পুষ্টিকর খাবার খান এবং নিজে পর্যাপ্ত ঘুমান ও বিশ্রাম নিন সন্তান জন্মদানের পর একজন মায়ের ব্যস্ততা কয়েক গুণ বেড়ে যায় এসময়ে নবজাতকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিজের খেয়াল রাখাটাও জরুরি প্রসবের পর আপনার নানান ধরনের সমস্যা হতে পারে এই সমস্যাগুলো এড়িয়ে চলতে অথবা এসব থেকে রেহাই পেতে আপনার করণীয় কী—তা জেনে রাখা প্রয়োজন কেননা একজন সুস্থ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল মাই পারেন তার সন্তানের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতেসন্তান জন্মদানের পর একজন মায়ের ব্যস্ততা কয়েক গুণ বেড়ে যায় এসময়ে নবজাতকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিজের খেয়াল রাখাটাও জরুরি প্রসবের পর আপনার নানান ধরনের সমস্যা হতে পারে এই সমস্যাগুলো এড়িয়ে চলতে অথবা এসব থেকে রেহাই পেতে আপনার করণীয় কী—তা জেনে রাখা প্রয়োজন কেননা একজন সুস্থ ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল মাই পারেন তার সন্তানের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে হাসপাতালে সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি হলে প্রসবপরবর্তী কয়েক ঘন্টা আপনাকে পোস্টঅপারেটিভ রুমে রাখা হবে এরপরে আপনাকে সাধারণ ওয়ার্ডে অথবা কেবিনে পাঠানো হবে আর কোনো ধরনের এনেস্থিসিয়া ছাড়া যোনিপথে ডেলিভারি হলে এবং আপনার সার্বিক অবস্থা ভালো থাকলে লেবার রুম থেকে সরাসরি আপনাকে সাধারণ ওয়ার্ডে অথবা কেবিনে পাঠানো হবে শারীরিক অবস্থা ভালো থাকলে আপনি প্রসবের পর পরই বাচ্চাকে কোলে নিতে পারবেন এবং বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেনআপনি ও আপনার শিশু সুস্থ থাকলে নরমাল ডেলিভারির ক্ষেত্রে সাধারণত কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা এবং সিজারিয়ান সেকশনের পর প্রায় চার দিন হাসপাতালে থাকতে হতে পারে[১] তবে মা ও শিশুর শারীরিক অবস্থার ভিত্তিতে এই সময়টুকু কমবেশি হয় তাই আপনার শারীরিক অবস্থা বিবেচনা করে কর্তব্যরত চিকিৎসক আপনাকে নির্দিষ্ট সময় পর হাসপাতাল থেকে ছুটি দিবেনহাসপাতালে থাকাকালীন সময়ে আপনার সার্বিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করার জন্য যেসব বিষয়ে গুরুত্ব দেওয়া প্রয়োজন সেগুলো হলো—নিয়মিত পর্যবেক্ষণে থাকাসন্তান জন্মের ঠিক পরের সময়টায় সাধারণত ডাক্তার নার্স মিডওয়াইফ ও সংশ্লিষ্ট অন্যান্য স্বাস্থকর্মীরা আপনাকে পর্যবেক্ষণে রাখবেন এসময়ে আপনার রক্তচাপ পালস তাপমাত্রা ও প্রস্রাবের পরিমাণ নির্দিষ্ট বিরতিতে মেপে দেখা হবে পাশাপাশি আপনার অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হচ্ছে কি না অথবা অন্য কোনো সমস্যা দেখা দিচ্ছে কি না সেসবও খেয়াল রাখা হবেমূলত প্রসবপরবর্তী কোনো জটিলতা হচ্ছে কি না তা দেখার জন্য আপনাকে কয়েক ঘন্টা পর্যবেক্ষণে রাখা হয় বিশেষ করে যদি কোনো ধরনের এনেস্থিসিয়ার (যেমন স্পাইনাল ব্লক ও এপিডুরাল ব্লক) মাধ্যমে আপনার অপারেশন অথবা যোনিপথে ডেলিভারি হয়ে থাকে তাহলে কিছুটা বেশি সময় পর্যন্ত আপনাকে পোস্টঅপারেটিভ রুমে পর্যবেক্ষণে রাখা হতে পারেসার্বিক স্বাস্থ্য বিবেচনা করে আপনাকে বিপদমুক্ত বলে মনে হলে দায়িত্বরত চিকিৎসক আপনাকে হাসপাতালের স্বাভাবিক ওয়ার্ডে অথবা কেবিনে পাঠিয়ে দিবেনব্যথা নিরাময় করাপ্রসবের পর কয়েক দিন আপনার শরীরের নানান স্থানে ব্যথা অনুভব হতে পারে যেমন স্তনে তলপেটে মলদ্বার ও যোনিপথের মধ্যবর্তী স্থানে এবং সিজারের কাটা স্থানে কিছু ক্ষেত্রে ঔষধ ছাড়াই ব্যথা কমে যেতে পারে তবে ব্যথা না কমলে কিংবা অপারেশন হয়ে থাকলে আপনার ও আপনার বুকের দুধ পানকারী নবজাতকের জন্য নিরাপদ ব্যথার ঔষধ বেছে নেওয়া হয় যেমন—প্যারাসিটামল নন স্টেরয়ডাল প্রদাহনাশক যেমন আইবুপ্রোফেন ওপিওয়েড জাতীয় ব্যথানাশক যেমন মরফিন কোডেইন ও ট্রামাডলএক্ষেত্রে প্রথম সারির ব্যথার ঔষধ হিসেবে প্যারাসিটামল ব্যবহার করা হয় তবে ননস্টেরয়ডাল প্রদাহনাশক ও প্যারাসিটামলের সম্মিলিত ব্যবহার প্রসবপরবর্তী ব্যথার সমস্যায় ভালো কাজ করে[২]অপরদিকে ওপিওয়েড গ্রুপের ঔষধ ডাক্তারের পর্যবেক্ষণ ব্যতীত বেশি দিন সেবন করা ঠিক নয় অনেক ক্ষেত্রে দেখা যায় যে মা এসব ঔষধ সেবন করলে বুকের দুধ পানকারী শিশুর ঝিমুনিভাব শ্বাসকষ্ট কোষ্ঠকাঠিন্য ও বুকের দুধ পানে সমস্যা হতে পারে[৩]তাই প্রসবপরবর্তী সময়ে ওপিওয়েড গ্রুপের ঔষধ এড়িয়ে চলা ভালো তবে ঠিক কোন ব্যথার ঔষধ সেবন করলে আপনি ভালো ফলাফল পেতে পারেন সেটি জানার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিনসিজার অথবা এপিডুরাল ব্লকের মাধ্যমে ডেলিভারি হলে প্রথম কয়েকদিন হাসপাতালে ইনজেকশন অথবা ক্যানুলার মাধ্যমে ব্যথার ঔষধ দেওয়া হয়ে থাকে পরবর্তীতে আপনার শরীর থেকে এনেস্থিসিয়ার প্রভাব কেটে গেলে ইনজেকশনের পরিবর্তে মুখে সেবনের ঔষধ দেওয়া হয় এসময়ে হট ওয়াটার ব্যাগ অথবা হিটিং প্যাড কিংবা গরম কাপড়ের সেঁক দিলেও আপনি কিছুটা আরাম পেতে পারেনমলদ্বার ও যোনিপথের মধ্যবর্তী স্থানের ব্যথা হলে আইসপ্যাক অথবা কাপড়ে মোড়ানো বরফ দিয়েও কিছুটা উপকার পেতে পারেন হাসপাতাল থেকে চলে আসার সময়েও প্রয়োজন হলে আপনাকে ছাড়পত্রে ব্যথানাশক ওষুধ কতদিন ও কীভাবে গ্রহণ করতে হবে তা লিখে দেওয়া হবেকাটা স্থানের যত্ন নেওয়াআপনার যদি সিজার অথবা এপিসিওটমির মাধ্যমে প্রসব হয়ে থাকে কিংবা ডেলিভারির সময়ে যোনিমুখের আশেপাশে ছিঁড়ে যায় তাহলে কাটা অথবা ছেঁড়া জায়গায় সেলাই করা হবে এই সেলাইয়ের ওপর একটি ব্যান্ডেজ দেওয়া থাকবেব্যান্ডেজটি কমপক্ষে ২৪ ঘন্টা পর্যন্ত রাখা হয় এরপর প্রয়োজনমতো নিয়মিত বিরতিতে সেলাইয়ের জায়গাটি জীবাণুনাশক দ্রবণ দিয়ে পরিষ্কার (ড্রেসিং) করে দেওয়া হবে এসময়ে চিকিৎসক আপনার সেলাইয়ের স্থানে কোনো ইনফেকশন হচ্ছে কি না তা চেক করে দেখতে পারেনপুষ্টির চাহিদা পূরণ করাআপনার ও আপনার সন্তানের কোনো জটিলতা না থাকলে প্রসবের দিন থেকেই আপনি বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন আপনি নিজেও আপনার চাহিদামতো পুষ্টিকর খাবার খেতে এবং পানি পান করতে পারবেনতবে এনেস্থিসিয়া দিয়ে সিজার অপারেশন কিংবা যোনিপথে ডেলিভারি হলে আপনি কখন থেকে স্বাভাবিক খাবার খেতে পারবেন তা চিকিৎসক নির্ধারণ করে দিবেন এর আগ পর্যন্ত আপনাকে ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পুষ্টিসমৃদ্ধ তরল ও অন্যান্য ঔষধ দেওয়া হবেপর্যাপ্ত পরিমাণে প্রস্রাব হওয়াডেলিভারির পরে যত দ্রুত সম্ভব আপনি প্রস্রাব করার চেষ্টা করবেন সিজার হলে আপনার প্রস্রাবের রাস্তায় অন্তত ১২ ঘন্টা একটি ক্যাথেটার বা প্রস্রাবের নল পরানো থাকবে এরপর থেকে আপনি নিজেই স্বাভাবিকভাবে প্রস্রাব করতে পারবেনডেলিভারির পর পরই আপনার প্রস্রাব করতে কিছুটা সমস্যা হতে পারে তাই ডেলিভারির পর ২৪ ঘন্টা আপনার ঠিকমতো প্রস্রাব হচ্ছে কি না সেটি কর্তব্যরত ডাক্তার অথবা নার্স পর্যবেক্ষণে রাখেহাঁটাহাঁটি শুরু করাআপনার কেবিন বা বিছানায় যাওয়ার পর সুস্থ বোধ করলে যত দ্রুত সম্ভব অল্প অল্প করে হাঁটাচলা করতে শুরু করুন হাঁটাহাঁটি করলে প্রসব পরবর্তী সময়ে ডিপ ভেইন থ্রম্বোসিস নামক রোগের ঝুঁকি কমে যায় তবে হাঁটতে শুরু করার আগে অবশ্যই আপনার চিকিৎসক অথবা নার্সের সাথে পরামর্শ করে নিনপ্রথম বারে হাঁটার সময়ে অন্য কাউকে ধরে অথবা কারও সাহায্য নিয়ে হাঁটুন কেননা তখনো আপনার শরীর বেশ দুর্বল থাকতে পারে প্রথম দিকে গোসলে যাওয়ার সময়েও কারও সাহায্য নেওয়ার চেষ্টা করুনহাসপাতালে নির্ধারিত সময় কাটানোর পর চেকআপ অনুযায়ী সবকিছু স্বাভাবিক থাকলে চিকিৎসক আপনাকে প্রয়োজনীয় ঔষধ ও উপদেশসহ একটি প্রেসক্রিপশন দিবেন—যা সাধারণত ছাড়পত্র নামে পরিচিত এরপর আপনি আপনার সন্তানসহ বাড়ি ফিরতে পারবেন হাসপাতাল থেকে বাড়ি ফেরার আগে কিছু বিষয় সম্পর্কে জেনে রাখা ভালো এতে করে বাড়িতে যেয়ে আপনার ও শিশুর যত্ন নিতে আপনার কিছুটা সুবিধা হবে তাই বাড়ি ফেরার আগে যেসব বিষয় সম্পর্কে জেনে নিতে পারেন সেগুলো হলো—আপনার ও আপনার সন্তানের কীভাবে যত্ন নিতে হবে তা জেনে নিন শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর নিয়ম জেনে নিন এবং এক্ষেত্রে কোনো অসুবিধা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন কোন লক্ষণগুলো দেখা দিলে চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে এবং কোনগুলোর ক্ষেত্রে হাসপাতালের জরুরি বিভাগে যেতে হবে তা আপনার চিকিৎসকের কাছে জেনে নিন পরবর্তীতে চেকআপের জন্য কবে হাসপাতালে আসতে হবে তা জেনে নিন যেমন সেলাই কাটার তারিখ শিশুকে টিকা দেওয়ার তারিখগুলো এবং প্রসবপরবর্তী চেকআপের তারিখগুলো জেনে নিন নবজাতক শিশুকে সাধারণত জন্মের পর পরই হাসপাতাল থেকে ভিটামিনকে এবং বিসিজি টিকা দেওয়া হয় এটি আপনার শিশু পেয়েছে কি না তা খেয়াল করুন[৪][৫] প্রসবের পর ব্যথা কমানোর জন্য ছাড়পত্রের বাইরে কোনো ওষুধ নিতে পারবেন কি না সেটি চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করে নিন ছাড়পত্রে পরবর্তী ওষুধ ও পরামর্শ লেখা আছে কি না তা দেখে ও বুঝে নিন এই সংক্রান্ত অথবা এর বাইরেও যদি কোনো প্রশ্ন থেকে থাকে তাহলে তা চিকিৎসককে জিজ্ঞাসা করে নিন সিজার কিংবা নরমাল ডেলিভারি উভয় ক্ষেত্রে প্রসবপরবর্তী সময়ে আপনি কিছু জটিলতায় ভুগতে পারেন তাই আগে থেকে জেনে রাখা প্রয়োজন যে কোন ধরনের লক্ষণ দেখা দিলে তা পরবর্তীতে মারাত্মক জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে এতে করে দ্রুত চিকিৎসার মাধ্যমে বেশ কিছু সমস্যার তীব্রতা কমিয়ে আনা সম্ভব হতে পারেযেসব লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে সেগুলো হলো—জ্বর আসা ও তলপেটে প্রচুর ব্যথা হওয়া প্রস্রাব ধরে রাখতে না পারা অর্থাৎ লিক হওয়া এবং প্রস্রাবের সময়ে ব্যথা হওয়া যোনিপথে হঠাৎ করে অথবা প্রচুর পরিমাণে রক্ত যাওয়া সাথে পালস বা নাড়ির গতি দ্রুত বেড়ে যাওয়া অজ্ঞান হয়ে যাওয়া এবং মুখ কাগজের মতো ফ্যাকাশে সাদা হওয়া ক্ষতস্থান অতিরিক্ত লাল হয়ে যাওয়া ফুলে যাওয়া অথবা ব্যথা অনুভব করা এবং ক্ষতস্থান থেকে পুঁজ ও দুর্গন্ধ বের হওয়া কাশি বুকে ব্যথা অথবা শ্বাসকষ্ট হওয়া পায়ের রানের পেছনের মাংসপেশি ফুলে লাল হয়ে যাওয়া এবং প্রচণ্ড ব্যথা বমি হওয়া মাথা ব্যথা করা এবং চোখে ঝাপসা দেখা ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা করা দীর্ঘদিন ধরে আরেকটি প্রাণকে নিজের শরীরে ধারণ করা এবং এর বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু জোগান দেওয়া সহজ নয় এই লম্বা সফরে আপনার শরীরেও ছোটোবড়ো অসংখ্য পরিবর্তন আসবে এই পরিবর্তন আসতে যেমন সময় লাগে তেমনি পূর্বের অবস্থায় ফিরে যেতেও যথেষ্ট সময় লাগবেতবে এ নিয়ে দুশ্চিন্তায় কিংবা বিষণ্ণতায় ভুগবেন না সুষম খাবার এবং নিয়মতান্ত্রিক জীবনযাপনের মাধ্যমে ধীরে ধীরে আপনি আগের স্বাস্থ্য ফিরে পেতে পারেন তবে কখনোই তাড়াহুড়ো করে ফিট হওয়ার জন্য চেষ্টা করা যাবে না এতে হিতে বিপরীত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে নিজের ও সন্তানের সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে এসময়ে আপনি যা যা করতে পারেন—১ পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খানআপনার ও আপনার শিশুর পরিপূর্ণ পুষ্টি বজায় রাখার জন্য আপনার সুষম খাবার খাওয়া জরুরি কেননা শিশুর প্রথম ছয় মাসের পুষ্টি আপনার বুকের দুধের ওপর নির্ভরশীল তাই আপনি পর্যাপ্ত পরিমাণে আমিষ শর্করা ফ্যাট ভিটামিন ও খনিজ লবণযুক্ত খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন খাবার তালিকায় সবসময় বেশি করে টাটকা ফল ও শাকসবজি রাখুনতবে এসময়ে আপনি বাড়তি ওজন নিয়ে হতাশায় ভুগতে পারেন প্রসবের কিছুদিন পর সাধারণত ওজন নিজে থেকেই অনেকটা কমে যায় বিশেষ করে আপনি যদি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান তাহলে ধীরে ধীরে আপনার ওজন কমে যেতে পারে লম্বা সময় ধরে ধীরে ধীরে ওজন কমানো নিরাপদ কেননা এতে আপনার বুকের দুধ উৎপাদন কমার ভয় থাকে নাস্বাভাবিক নিয়মে যদি আপনার ওজন না কমে তাহলে কিছু খাবার খাওয়া বাদ দিতে পারেন যেমন কোমল পানীয় মিষ্টি খাবার ভাজাপোড়া এবং অতিরিক্ত তেল সমৃদ্ধ খাবার এসব খাবারের তেমন কোনো পুষ্টিগুণ নেইতবে যেকোনো রকম অস্বাস্থ্যকর ডায়েট এড়িয়ে চলুন প্রয়োজনে একজন পুষ্টিবিদের কাছ থেকে আপনার জন্য উপযুক্ত একটি খাদ্যতালিকা তৈরি করে নিতে পারেন২ নিয়মিত হাঁটাচলা ও ব্যায়াম করুনপ্রসবের পর যত তাড়াতাড়ি আপনি হাঁটাহাঁটি শুরু করতে পারবেন ততই আপনার জন্য ভালো এতে আপনার শরীরে রক্ত জমাট বাঁধার ঝুঁকি অনেকটাই কমে যাবে তাই বিছানায় যাওয়ার পর সুস্থবোধ করলে হাঁটাহাঁটি শুরু করে দিন তবে নিজেকে অতিরিক্ত কষ্ট দিয়ে জোর করে হাঁটা যাবে না বেশি সমস্যা হলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিনবাড়িতে গিয়ে আপনি নিয়মিত ব্যায়াম শুরু করতে পারেন সাধারণত প্রসবের পর প্রথম ৬ থেকে ১২ সপ্তাহ পর্যন্ত হালকা ধাঁচের ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয় তবে আপনি আগে থেকেই ভারী ব্যায়ামে অভ্যস্ত থাকলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে সেটিও ধীরে ধীরে শুরু করতে পারেনতলপেটের কিছু ব্যায়াম করে আপনি পেটের মেদ কমাতে পারেন তবে এ ধরনের ব্যায়াম শুরু করার আগে চিকিৎসকের অনুমতি নিয়ে নেওয়া দরকার ডেলিভারির ৬ সপ্তাহ পর আপনি যখন চিকিৎসকের কাছে চেকআপের জন্য যাবেন তখন আপনার শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী ব্যায়াম সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন এ ছাড়াও ব্যায়াম করা কালীন প্রস্রাব লিক করলে তা চিকিৎসককে জানাবেন৩ প্রসবপরবর্তী চেকআপে যানপ্রসবের ২৪ ঘন্টার মধ্যে ১ম প্রসবপরবর্তী চেকআপের পর হাসপাতাল থেকে ছুটি নিলে পরবর্তীতে কমপক্ষে আরও তিনবার চেকআপের জন্য চিকিৎসকের কাছে যাওয়া প্রয়োজন[৬] চেকআপের সময়গুলো হলো—২য় চেকআপ প্রসবপরবর্তী ৩য় দিনে ৩য় চেকআপ প্রসবপরবর্তী ৭ম১৪তম দিনে ৪র্থ চেকআপ প্রসবপরবর্তী ৬ষ্ঠ সপ্তাহেএই চেকআপগুলোয় আপনার শারীরিক ও মানসিক অবস্থা পর্যবেক্ষণের পাশাপাশি শিশুর জন্য প্রয়োজনীয় টিকা এবং বুকের দুধ খাওয়ানোর নিয়মসহ আরও নানান বিষয়ে পরামর্শ দেওয়া হবে৪ প্রসবের পর সহবাস সম্পর্কে জানুনসাধারণত আপনার যোনিপথের রক্তপাত বন্ধ হয়ে গেলে এবং ক্ষত সেরে গেলে আপনি নিরাপদে সহবাস করতে পারবেন তবে সন্তান প্রসবের পর আপনার যোনিপথে অথবা পেটের সেলাইয়ে ব্যথা থাকতে পারে পাশাপাশি আপনি মানসিকভাবেও প্রস্তুত নাও থাকতে পারে তাই এক্ষেত্রে যথেষ্ট সময় নিয়ে আগানোই ভালো চেষ্টা করুন আপনার সঙ্গীর সাথে এই বিষয়ে খোলামেলা আলোচনা করারএ ছাড়া হরমোনাল বিভিন্ন পরিবর্তনের কারণে আপনার যোনিপথ শুষ্ক থাকতে পারে সহবাসের সময় কোনো অস্বস্তিবোধ হলে আপনার চিকিৎসকের পরামর্শ নিন একজন নারীর শরীরে যোনি ও পায়ুপথের অন্তর্বর্তী অংশটিকে ডাক্তারি ভাষায় পেরিনিয়াম বলে এই অংশটি ত্বক ও পেশি দিয়ে গঠিত নরমাল ডেলিভারিতে যোনিপথে সন্তান প্রসবের সময় স্বাভাবিকভাবেই পেরিনিয়ামে চাপ পড়ে যার ফলে অনেকসময় জায়গাটি ছিঁড়ে যায়একজন নারীর শরীরে যোনি ও পায়ুপথের অন্তর্বর্তী অংশটিকে ডাক্তারি ভাষায় পেরিনিয়াম বলে এই অংশটি ত্বক ও পেশি দিয়ে গঠিত নরমাল ডেলিভারিতে যোনিপথে সন্তান প্রসবের সময় স্বাভাবিকভাবেই পেরিনিয়ামে চাপ পড়ে যার ফলে অনেকসময় জায়গাটি ছিঁড়ে যায়পেরিনিয়াল ম্যাসাজ হলো মালিশের মাধ্যমে পেরিনিয়ামকে স্ট্রেচ বা টানটান করার একটি উপায় গর্ভাবস্থার শেষের দিকে নিয়ম মেনে পেরিনিয়াল ম্যাসাজ করা যায় আবার প্রসবের সময় যখন মা পুশ করে বা ধাক্কা দিয়ে সন্তান নিচে নামানোর চেষ্টা করে তখনও এই ম্যাসাজটি করা যেতে পারেগবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই ম্যাসাজ ডেলিভারি জনিত যোনিপথের ব্যথা পেরিনিয়ামের ক্ষত ও যোনিপথে সেলাইয়ের প্রয়োজনীয়তা কমাতে সাহায্য করতে পারে[১] যোনিপথে প্রসবের বেশির ভাগ ক্ষেত্রে পেরিনিয়াম যোনি অথবা বাইরের যৌনাঙ্গে ক্ষত হওয়া অথবা ছিঁড়ে যাওয়ার ঘটনা ঘটে থাকে তবে অধিকাংশ ক্ষেত্রে এসব ক্ষত বা ছেড়া পুরোপুরি শুকিয়ে যায় এবং দীর্ঘমেয়াদী কোনো জটিলতা তৈরি করে না তবে পেরিনিয়ামে বড়ো কোনো ক্ষত হলে তা বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা তৈরি করতে পারে[২] যেমন—প্রসবের পরও দীর্ঘদিন পর্যন্ত পেরিনিয়ামে ব্যথা হতে থাকা সহবাসের সময় যৌনাঙ্গে ব্যথা হওয়া প্রস্রাবের সমস্যা হও্যা পায়খানা ধরে রাখতে সমস্যা হওয়া এসব সমস্যা এড়ানোর জন্য যখন ডাক্তাররা মনে করেন বড় রকমের ক্ষত তৈরি হওয়ার সম্ভাবনা আছে তারা প্রসবের সময় যোনিপথে ছোটো একটি সাইড কাটা দেন যার নাম এপিসিওটমি এর ফলে প্রসবের রাস্তা প্রশস্ত হয় যাতে শিশু সহজে বের হয়ে আসতে পারে তবে এপিসিওটমিও পুরোপুরি জটিলতা মুক্ত নয় এটি থেকে কখনো কখনো জটিলতা তৈরি হতে পারেযোনিপথে প্রসবের ক্ষেত্রে পেরিনিয়ামের ক্ষত বলতে সন্তানের যোনিপথ দিয়ে বের হওয়ার ফলে তৈরি ক্ষত এবং প্রয়োজনে কাটা এপিসিওটমি দুইটাই বোঝায় পেরিনিয়াল মালিশের উদ্দেশ্য হলো প্রসবের জন্য পেরিনিয়ামকে প্রস্তুত করে তোলা যাতে প্রসবের সময় যোনিপথ পেরিনিয়াম ও পায়ুপথের ওপর যেই অতিরিক্ত চাপ পড়ে তার সাথে পেরিনিয়াম মানিয়ে নিতে পারে এবং অতিরিক্ত সাইড কাটারও প্রয়োজন না পড়েগবেষণায় দেখা গেছে গর্ভাবস্থায় পেরিনিয়াল ম্যাসাজ করা হলে প্রসবের সময় এপিসিওটমির প্রয়োজনীয়তা কমে যায় অর্থাৎ ম্যাসাজ করে প্রসব পথ টানটান করার ফলে প্রসবের রাস্তা সন্তানকে বের করে আনার চাপ নেওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে যায় যার ফলে বড় রকমের ক্ষত হওয়ার সম্ভাবনা কমে যায় এবং পেরিনিয়ামে আলাদা করে সাইড কাটার প্রয়োজন পড়ে না প্রথমবার যোনিপথে সন্তান প্রসবের ক্ষেত্রে গর্ভের শিশু যদি আকারে বড়ো হয় সাধারণত ৪ কেজি বা ৯ পাউন্ডের বেশি হলে ডেলিভারির সময় ফোরসেপ বা ভেনটুস জাতীয় কোনো যন্ত্র ব্যবহারের প্রয়োজন হলে গর্ভের ভেতরে শিশু লম্বালম্বি না থেকে আড়াআড়ি থাকলে কিংবা মুখ সামনের দিকে না থেকে পেছনের দিকে ঘুরানো থাকলে প্রসবের সময় মায়ের পজিশন যদি এমন হয় যাতে পেরিনিয়ামে অতিরিক্ত চাপ পড়ে যদি প্রসবের সময় বাচ্চাকে চাপ দিয়ে বা পুশ করে নিচে নামাতে অনেক বেশি সময় লাগে প্রসূতি মায়ের বয়স ৩০ বছর বা এর বেশি হলে এর আগে কখনো এপিসিওটোমি বা সাইড কাটার প্রয়োজন হয়ে থাকলে এর আগে সিজার হয়েছে কিন্তু এবার নরমাল ডেলিভারি করাতে চাচ্ছেন এমন মায়েদের ক্ষেত্রে মা যদি অপুষ্টিতে ভুগে থাকেন মায়ের শরীরে কোলাজেন এর ঘাটতি থাকলে কিংবা ঠিকমতো কোলাজেন তৈরি না হলে গর্ভাবস্থার ৩৫তম সপ্তাহ থেকে নিয়মিত পেরিনিয়াল ম্যাসাজ করার পরামর্শ দেওয়া হয় সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার করে ম্যাসাজ করুন এবং প্রতিবার কমপক্ষে ৫ মিনিট ম্যাসাজ করার চেষ্টা করুন যদি সপ্তাহে ৩ থেকে ৪ বার করা কষ্টকর মনে হয় তাহলে সপ্তাহে এক অথবা দুই বার করেও কিছুটা লাভ পেতে পারেন ম্যাসাজের প্রস্তুতিঃপেরিনিয়াল মালিশ শুরু করার আগে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বিবেচনায় রাখতে হবে যেমন—১ সঠিক দেহভঙ্গি মালিশের সময় এমনভাবে বসবেন বা দাঁড়াবেন যাতে আপনি স্বচ্ছন্দে ম্যাসাজের প্রক্রিয়া সম্পন্ন করতে পারেন গর্ভবতী নারীরা বিভিন্ন ভঙ্গীতে বসে অথবা দাড়িয়ে ম্যাসাজ করতে পারবেন যেমন—বিছানা অথবা সোফায় বসে বালিশে পিঠ হেলান দিয়ে বাথরুমের কমোডে বসে দাঁড়িয়ে এক পা লম্বা করে টুলের ওপর রেখে এ ক্ষেত্রে কিছু সময় পর পর টুলের ওপর থেকে এক পা নামিয়ে অন্য পা সোজা করে রাখবেন বাথ টাবে বসে হেলান দিয়ে এক পা বাথ টাবের পাশ দিয়ে ঝুলিয়ে এ ক্ষেত্রেও কিছু সময় এক পা বাথ টাবের পাশ দিয়ে ঝুলাবেন এবং কিছু সময় পর অন্য পা ঝুলাবেনআপনার জন্য যেটা সবচেয়ে আরামদায়ক মনে হয় আপনি সেই ভঙ্গীটি বেছে নিবেন মালিশ শুরুর আগে আপনার প্রস্রাবের চাপ নেই তা নিশ্চিত করুন প্রস্রাবের চাপ থাকলে প্রস্রাব করে নিন২ পরিষ্কার হাত ম্যাসাজ শুরু করার আগে দুই হাত ভালো করে ধুয়ে নিন৩ মালিশের জন্য তেল ম্যাসাজটি সহজ হওয়ার জন্য পেরিনিয়ামের ওপর মসৃণভাবে আঙ্গুল চালিয়ে যেতে হবে সেজন্য আঙ্গুলে তেল মেখে মালিশ করতে পারেন আপনি মালিশের জন্য যেই দুই আঙ্গুল ব্যবহার করবেন সেগুলো ভালোভাবে তেলতেলে করতে যতটুকু তেল প্রয়োজন ততটুকু তেল ব্যবহার করুনমালিশের জন্য অলিভ অয়েল বা জলপাইয়ের তেল ভিটামিন ই তেল আমন্ড অয়েল বা কাঠবাদামের তেল ব্যবহার করতে পারেনতবে এই ম্যাসাজের জন্য বাজারের বেবি অয়েল খনিজ তেল (যেমন প্যারাফিন লিকুইড প্যারাফিন ওয়াক্স) অথবা ঠোঁটে মাখার পেট্রোলিয়াম জেলি (যেমন ভ্যাসলিন অথবা মেরিল পেট্রোলিয়াম জেলি) ব্যবহার করবেন না এগুলো শুধু বাহ্যিক ব্যবহারের জন্য উপযোগী করে তৈরি করা হয়ে থাকে৩ নখ ছোটো রাখা আপনার যোনি ও পেরিনিয়াম গঠনগত ভাবে খুবই কোমল নখ লম্বা থাকলে মালিশের সময় নখ দিয়ে এই জায়গাগুলোতে আঘাত লাগতে পারে আবার নখ লম্বা থাকলে মালিশের সময় খোঁচা লেগে পুরো প্রক্রিয়াটি অস্বস্তিকর হয়ে পড়তে পারে তাই মালিশের আগে নখ কেটে ছোটো করে নিতে হবে৪ গরম পানিতে গোসল ম্যাসাজের আগে আগে কুসুম গরম পানি দিয়ে গোসল করে নিতে পারেন এতে করে আপনি মানসিকভাবে স্বস্তিতে থাকতে পারবেন একই সাথে গরম পানি দিয়ে গোসল করার কারণে আপনার পেরিনিয়ামের পেশীগুলো কিছুটা শিথিল আর নমনীয় হবে যার ফলে মালিশের মাধ্যমে এদের স্ট্রেচ বা টানটান করা সহজ হতে পারে ম্যাসাজের জন্য নিচের ধাপগুলো অনুসরণ করুন ধাপ ১ মালিশের জন্য আপনার দুই বৃদ্ধাঙ্গুলি আপনার যোনির ভেতর প্রবেশ করবেন আপনার সুবিধার জন্য আপনার দুই তর্জনীও (index finger) ব্যবহার করতে পারেন আঙ্গুলের দ্বিতীয় গিট পর্যন্ত প্রবেশ করবেনধাপ ২ এবার যোনির ভেতরে প্রবেশ করা দুই আঙ্গুল দিয়ে নিচের দিক অর্থাৎ আপনার পায়ুর দিকে চাপ দিন ততটুকু চাপ দিন যতটুকুতে আপনি যোনির চারপাশে টানটান অনুভব করবেনধাপ ৩ এই চাপ প্রয়োগ করে ফেলতে পারলে এবার আঙ্গুল দুইটি ডান থেকে বাম পাশে অথবা বাম থেকে ডান পাশে নিয়ে যোনিপথ মালিশ করুন আপনার আঙ্গুল এমনভাবে নাড়বেন যেন আপনি ইংরেজি বর্ণ U বানাচ্ছেনছবি পেরিনিয়াল ম্যাসাজের পদ্ধতিচেষ্টা করবেন এসময়ে পেরিনিয়াম অর্থাৎ যোনির চারপাশের এই পেশীগুলো যেন নরম করে রাখা যায় এই পর্যায়ে আপনি নিজের প্রসব প্রস্তুতির অংশ হিসেবে ধীরে ধীরে লম্বা লম্বা শ্বাস নিতে পারেন সন্তান প্রসবের সময়ও এক পর্যায়ে চিকিৎসক আপনাকে এরকম লম্বা শ্বাস নিতে বলবেন২ থেকে ৩ মিনিট এভাবে মালিশ করুন আপনি পেরিনিয়ামের বাইরের ত্বকও মালিশ করতে পারেন পুরো প্রক্রিয়াটি ২ থেকে ৩ বার করতে পারেন মালিশের শুরুতে পেরিনিয়াম এর জায়গাটি খুব টাইট হয়ে আছে বলে মনে হতে পারে কিন্তু মালিশ করার সাথে সাথে জায়গাটি আস্তে আস্তে নরম ও রিল্যাক্সড হয়ে আসবেএই মালিশটি করার সময় সাধারণত কোনো রকম ব্যথা পাওয়ার কথা নয় যদি কোনো ধরনের ব্যথা অনুভব হয় সাথে সাথে মালিশ বন্ধ করে দিন এবং পরবর্তীতে সাবধানতার সাথে আবার চেষ্টা করুননিজে নিজে মালিশ করা অস্বস্তিকর অথবা কঠিন মনে হলে আপনি আপনার সঙ্গীর সাহায্য নিতে পারেন সে ক্ষেত্রে পুরো প্রক্রিয়াটি একই রকম শুধু আপনার পরিবর্তে আপনার সঙ্গী তার আঙুল যোনিতে প্রবেশ করিয়ে পেরিনিয়াম মালিশ করবেন তবে মালিশের আগে হাত ও নখ পরিষ্কার রাখার সতর্কতাটি অবশ্যই যেন মেনে চলা হয় সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে পেরিনিয়াম মালিশের পাশাপাশি পেরিনিয়ামে বড়ো রকমের ক্ষত তৈরি না হতে দেওয়ার জন্য প্রসবের সময় যেসব পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারেঃ১ প্রসবের পজিশন সাধারণত যোনিপথে প্রসবের জন্য মাকে চিৎ করে শুইয়ে দুই পা ফাকা করে ও হাঁটুতে ভাঁজ করে দুই পাশে উঁচু করে রাখা হয় তবে ধারণা করা হয় এক পাশে কাত হয়ে শুয়ে কিংবা হাঁটু গেরে সামনে দুই হাতে ভর করে (allfours) প্রসব করলে পেরিনিয়ামে ভয়াবহ ক্ষত তৈরি হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে২ গরম সেক সন্তানের নিচে নেমে আসার সময় যদি চিকিৎসক অথবা কোনো স্বাস্থ্যকর্মী আপনার পেরিনিয়ামে প্যাড অথবা গজ দিয়ে গরম সেক দেন সেক্ষেত্রেও ক্ষত তৈরি হওয়ার আশঙ্কা কম থাকে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্যই বেশ উপকারী তবে কখনো কখনো বুকের দুধ খাওয়ানোর ফলে শিশুর সমস্যাও হতে পারে তাই আপনার জেনে নেওয়া প্রয়োজন কোন পরিস্থিতিতে আপনার শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো উচিত নয়সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্যই বেশ উপকারী তবে কখনো কখনো বুকের দুধ খাওয়ানোর ফলে শিশুর সমস্যাও হতে পারে কিছু কিছু ইনফেকশন আপনার কাছ থেকে বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে আপনার শিশুতেও ছড়াতে পারে আপনি এসব ইনফেকশনে আক্রান্ত হলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন যেমন—এইচআইভি বা এইডস যদি আপনি HIV এর চিকিৎসা অর্থাৎ এন্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি শুরু না করেন এবং এর ফলে আপনার শরীরের ভাইরাল লোডও না কমে সেক্ষেত্রে কোনো অবস্থাতেই সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে না এক্টিভ অবস্থায় থাকা যক্ষ্মা অর্থাৎ যে সময়টায় আপনার থেকে অন্য ব্যক্তি সংক্রমিত করে হতে পারে চিকেনপক্স যদি আপনার ডেলিভারির ৫দিন আগে থেকে প্রসবের ২ দিন পরে—এই সময়ের মধ্যে সংক্রমিত হয়ে থাকেন[৪] হার্পিস যদি এটির সংক্রমণ আপনার স্তনকে আক্রমণ করে হিউমান টি সেল লিম্ফোট্রপিক ভাইরাস ইবোলা ভাইরাসএইচআইভি ইনফেকশন বুকের দুধের মাধ্যমে মা থেকে শিশুর শরীরে ছড়াতে পারে তাই সাধারণত HIV পজিটিভ মায়েদের বুকের দুধ খাওয়াতে নিষেধ করা হয়তবে যদি মা ও শিশু এন্টিরেন্ট্রোভাইরাল থেরাপি নিয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে বুকের দুধের মাধ্যমে সংক্রমণের সম্ভাবনা কম থাকে এসব ক্ষেত্রে জন্মের পর প্রথম ছয় মাস অবশ্যই এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং বা শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়খেয়াল করুন আপনার যক্ষ্মা বা টিবি হওয়ার পর যদি ইতিমধ্যেই আপনি কমপক্ষে ২ সপ্তাহ যক্ষ্মার ঔষধ নিয়ে থাকেন এবং আপনার থেকে এই রোগ ছড়াতে না পারে অর্থাৎ পর পর তিন বার আপনার কফ পরীক্ষা করে আর যক্ষ্মার জীবাণু পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রে আপনি সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন কারণ যক্ষ্মার জীবাণু সাধারণত বুকের দুধের মাধ্যমে ছড়ায় না তবে এক্ষেত্রে সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর আগে আপনি যক্ষ্মার এক্টিভ ইনফেকশন স্টেইজে আছেন কি না তা কফ পরীক্ষার মাধ্যমে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিতে হবেকখন ইনফেকশন থাকার পরও খাওয়ানো যাবেকিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে ইনফেকশন থাকার পরও আপনি সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন—হেপাটাইটিস বি ইনফেকশনের ক্ষেত্রে যদি আপনার HBsAg পজিটিভ হয়ে থাকে তবে জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব (১২ ঘন্টার মধ্যেই) আপনার শিশুকে হেপাটাইটিস বি ভ্যাক্সিন ও ইমিউনোগ্লোবিউলিন দেওয়া হলে তাকে পরবর্তীতে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে সাধারণত বাধা নেই হেপাটাইটিস সি ইনফেকশন এর ক্ষেত্রে সাধারণত বুকের দুধ খাওয়ানো যায় তবে এক্ষেত্রে মায়ের স্তনের বোঁটায় ক্ষত থাকলে বা ফাটা থাকলে কিংবা ঐ স্থান থেকে রক্তপাত হলে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে জেনিটাল হার্পিস বা যৌনাঙ্গের হার্পিস ইনফেকশনের ক্ষেত্রে সেটি যদি আপনার স্তনকে সংক্রমণ না করে এবং সংক্রমিত জায়গাটি ঢেকে রাখা হয় সেক্ষেত্রে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে বাধা নেই কোরিওএমনিওনাইটিস ইনফেকশন বা গর্ভফুলের আবরণের ইনফেকশন যদি আপনার ডেলিভারির আগে হয় তবে প্রসবের পর শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে বাধা নেই এন্ডোমেট্রাইটিস বা জরায়ুর ইনফেকশন যদি আপনার ডেলিভারির পর হয় সেক্ষেত্রে তা শিশুর শরীরে ছড়ানোর আর সম্ভাবনা নেই সাধারণত সাইটোমেগালোভাইরাস ইনফেকশন এর ক্ষেত্রে বুকের দুধ খাওয়াতে নিষেধ নেই তবে এক্ষেত্রে আপনার প্রিটার্ম শিশু হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এরপরই তাকে বুকের দুধ খাওয়াবেন সাধারণত আপনার জ্বর হলে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করার প্রয়োজন নেই তবে এক্ষেত্রে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে বুকের দুধের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কোনো অসুখে জ্বর হয়েছে কি নাঅনেক মায়েরই প্রশ্ন থাকে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত অবস্থায় সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে কি না সাধারণত কোভিড সংক্রমিত অবস্থায়ও সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো যায় তবে এক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যেমন— আপনি মুখে একটি ফেস মাস্ক পরে নিন বা মুখ ঢেকে নিন আপনার শিশুকে বা দুধের বোতল স্পর্শ করার আগে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে নিন আপনি যদি নিচের ঔষধ বা দ্রব্যগুলো সেবন করেন সেক্ষেত্রে আপনার বুকের দুধের মাধ্যমে তা আপনার শিশুর শরীরে চলে যেতে পারে তাই আপনি নিচের ঔষধগুলো খেলে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন না—রক্ত জমাটবাধা প্রতিরোধের ঔষধ অ্যান্টি কোয়াগুলেন্টস এটি সতর্কতার সাথে অল্প ডোজে দেওয়া যেতে পারে তবে অধিক মাত্রায় গ্রহণ করলে আপনার শিশুর রক্তক্ষরণের সম্ভাবনা থাকে যেমন ওয়ারফারিন ক্যান্সারের ঔষধ বা সাইটোটক্সিক ড্রাগ এ ধরনের ঔষধ আপনার শিশুর শারীরিক বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দিতে পারে এমনকি ক্যান্সারও সৃষ্টি করতে পারে যেমন মেথোট্রিক্সেট সাইক্লোস্পোরিন সাইক্লোফসফামাইড বিষণ্ণতা ও মানসিক সমস্যার ঔষধ অ্যান্টি ডিপ্রেসেন্ট ড্রাগ এ ধরনের ঔষধ আপনার শিশুর শারীরিক ও মানসিক বৃদ্ধিকে প্রভাবিত করতে পারে পাশাপাশি আপনার শিশুর ঘুম ও খাবার গ্রহণের সমস্যা হতে পারে অনেকসময় মায়েরা আগে থেকেই ক্ষতিকর দ্রব্য গ্রহণ করে থাকেন এ ধরনের দ্রব্য বুকের দুধের মাধ্যমে সন্তানের শরীরে প্রবেশ করে এবং ক্ষতিকর প্রভাব ফেলে যেমন—অ্যালকোহল মায়ের অতিরিক্ত পরিমাণে অ্যালকোহল গ্রহণ শিশুর ঘুম ঘুম ভাব গভীর ঘুম দুর্বলতা দৈহিক বৃদ্ধি কমিয়ে ফেলা অস্বাভাবিক ওজন বৃদ্ধি করতে পারে কোকেইন মায়ের কোকেইন গ্রহণের ফলে শিশুর বমি ডায়রিয়া কাঁপুনি খিঁচুনি হতে পারে হিরোইন মা হিরোইন সেবন করলে সন্তানের কাঁপুনি অস্থিরতা খিঁচুনি খাবারের অনীহা দেখা যায় মারিজুয়ানা সন্তানের উপর মায়ের মারিজুয়ানা গ্রহণের প্রভাব এখনো জানা যায়নি তবে এর সম্ভাব্য ক্ষতিকর প্রভাবের কথা চিন্তা করে মায়েদের মারিজুয়ানা সেবন কিংবা গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকতে বলা হয় ফেনসাইক্লিডিন মায়ের ফেনসাইক্লিডিন গ্রহণে সন্তানের হ্যালুসিনেশন হতে পারেগবেষণায় দেখা গেছে ধূমপায়ী মায়েদের ক্ষেত্রে বুকের দুধে নিকোটিনের পরিমাণ তাদের রক্তের নিকোটিনের পরিমাণের চেয়েও তিন গুণ বেশি থাকে ধূমপান করলে বুকের দুধ উৎপাদন যেমন কমে যায় সেই সাথে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়কালও কমে আসে এ ছাড়া ধূমপানের ফলে বুকের দুধের পুষ্টিগুণও ব্যাহত হয় স্বাভাবিক অবস্থায় দুধের যেই প্রতিরক্ষামূলক বৈশিষ্ট্য থাকে ধূমপান করলে তা কমে যায় তাই আপনার ও আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপকারী হলো ধূমপান সম্পূর্ণভাবে বর্জন করা আপনি ধূমপান করলে সেটি আপনার শিশুর সেকেন্ডারি স্মোকিং হিসেবে গণ্য হবে যা শিশুর শরীরে হাঁপানি ও অন্যান্য শ্বাসতন্ত্রের অসুখসহ নানান জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে এমনকি ধূমপানের ফলে শিশুর SIDS বা সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিন্ড্রোমে আক্রান্ত হয়ে আকস্মিক মৃত্যু হওয়ার ঝুঁকিও দেখা দিতে পারে[ মা ও মায়ের পাশাপাশি সন্তানের জন্য টিকা বা ভ্যাক্সিন দেওয়া প্রয়োজনীয় গবেষণায় দেখা গেছে স্মল পক্স এবং ইয়েলো ফিভার—এই দুইটি রোগের টিকা ছাড়া অন্য যেকোনো ভ্যাক্সিন (যেমন হেপাটাইটিস টিটেনাস ইনফ্লুয়েঞ্জা র‍্যাবিস টাইফয়েড কিংবা অন্যান্য) নেওয়ার পরও মায়েরা সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেনস্মল পক্সের টিকা দেওয়ার পর সন্তানের ইনফেকশন হওয়ার সম্ভাবনা থাকে আবার ইয়েলো ফিভারের ভ্যাক্সিন গ্রহণের পর সন্তানের বেশ কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে অনেকে মনে করেন যেসব লাইভ ভ্যাক্সিন আছে সেসব টিকা নিলে সন্তানের ক্ষতি হতে পারে তবে পরীক্ষার মাধ্যমে এমন কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়নিসন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো অবস্থায় কোভিড১৯ বা করোনা ভাইরাসের টিকা নেওয়া যাবে এতে মা বা শিশুর ক্ষতি হওয়ার কোনো ধরনের প্রমাণ পাওয়া যায়নি আপনার শিশুর যদি গ্যালাক্টোসেমিয়া নামের অসুখ থেকে থাকে তাহলে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো একেবারেই উচিত নয় এটি এক ধরনের জেনেটিক অসুখ এর ফলে সন্তান বুকের দুধের মধ্যে থাকা গ্যালাকটোজ হজমে সমস্যা হয়ে থাকেস্ক্রিনিং করানোর মাধ্যমে শিশুর গ্যালাক্টোসেমিয়া নির্ণয় করা যায় এতে করে খুব দ্রুত এ সমস্যার চিকিৎসাও শুরু করা যায়যদি এ সমস্যা নির্ণয় না হয় এবং সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো হয় সেক্ষেত্রে সন্তানের লিভারের সমস্যা বুদ্ধিমত্তার সমস্যা ও বৃদ্ধিজনিত ত্রুটি হতে পারে এমনকি আপনার সন্তান শকেও চলে যেতে পারেঅনেক শিশুর জন্মের সময় জন্ডিস হাইপারবিলিরুবিনেমিয়ার সমস্যা হয়ে থাকে এসব ক্ষেত্রে আপনি সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন কিছু কিছু ইনফেকশন আপনার কাছ থেকে বুকের দুধ খাওয়ানোর মাধ্যমে আপনার শিশুতেও ছড়াতে পারে আপনি এসব ইনফেকশনে আক্রান্ত হলে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকুন যেমন—এইচআইভি বা এইডস যদি আপনি HIV এর চিকিৎসা অর্থাৎ এন্টিরেট্রোভাইরাল থেরাপি শুরু না করেন এবং এর ফলে আপনার শরীরের ভাইরাল লোডও না কমে সেক্ষেত্রে কোনো অবস্থাতেই সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে না এক্টিভ অবস্থায় থাকা যক্ষ্মা অর্থাৎ যে সময়টায় আপনার থেকে অন্য ব্যক্তি সংক্রমিত হতে পারে চিকেনপক্স যদি আপনার ডেলিভারির ৫দিন আগে থেকে প্রসবের ২ দিন পরে—এই সময়ের মধ্যে সংক্রমিত হয়ে থাকেন হার্পিস যদি এটির সংক্রমণ আপনার স্তনকে আক্রমণ করে হিউমান টি সেল লিম্ফোট্রপিক ভাইরাস ইবোলা ভাইরাসএইচআইভি ইনফেকশন বুকের দুধের মাধ্যমে মা থেকে শিশুর শরীরে ছড়াতে পারে তাই সাধারণত HIV পজিটিভ মায়েদের বুকের দুধ খাওয়াতে নিষেধ করা হয়তবে যদি মা ও শিশু এন্টিরেন্ট্রোভাইরাল থেরাপি নিয়ে থাকে তবে সেক্ষেত্রে বুকের দুধের মাধ্যমে সংক্রমণের সম্ভাবনা কম থাকে এসব ক্ষেত্রে জন্মের পর প্রথম ছয় মাস অবশ্যই এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিডিং বা শুধুমাত্র বুকের দুধ খাওয়ানোর পরামর্শ দেওয়া হয়খেয়াল করুন আপনার যক্ষ্মা বা টিবি হওয়ার পর যদি ইতিমধ্যেই আপনি কমপক্ষে ২ সপ্তাহ যক্ষ্মার ঔষধ নিয়ে থাকেন এবং আপনার থেকে এই রোগ ছড়াতে না পারে অর্থাৎ পর পর তিন বার আপনার কফ পরীক্ষা করে আর যক্ষ্মার জীবাণু পাওয়া না যায় সেক্ষেত্রে আপনি সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন কারণ যক্ষ্মার জীবাণু সাধারণত বুকের দুধের মাধ্যমে ছড়ায় না তবে এক্ষেত্রে সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর আগে আপনি যক্ষ্মার এক্টিভ ইনফেকশন স্টেইজে আছেন কি না তা কফ পরীক্ষার মাধ্যমে অবশ্যই নিশ্চিত হয়ে নিতে হবেকখন ইনফেকশন থাকার পরও খাওয়ানো যাবেকিছু বিশেষ পরিস্থিতিতে ইনফেকশন থাকার পরও আপনি সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে পারবেন—হেপাটাইটিস বি ইনফেকশনের ক্ষেত্রে যদি আপনার HBsAg পজিটিভ হয়ে থাকে তবে জন্মের পর যত দ্রুত সম্ভব (১২ ঘন্টার মধ্যেই) আপনার শিশুকে হেপাটাইটিস বি ভ্যাক্সিন ও ইমিউনোগ্লোবিউলিন দেওয়া হলে তাকে পরবর্তীতে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে সাধারণত বাধা নেই হেপাটাইটিস সি ইনফেকশন এর ক্ষেত্রে সাধারণত বুকের দুধ খাওয়ানো যায় তবে এক্ষেত্রে মায়ের স্তনের বোঁটায় ক্ষত থাকলে বা ফাটা থাকলে কিংবা ঐ স্থান থেকে রক্তপাত হলে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো থেকে বিরত থাকতে হবে জেনিটাল হার্পিস বা যৌনাঙ্গের হার্পিস ইনফেকশনের ক্ষেত্রে সেটি যদি আপনার স্তনকে সংক্রমণ না করে এবং সংক্রমিত জায়গাটি ঢেকে রাখা হয় সেক্ষেত্রে সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়াতে বাধা নেই কোরিওএমনিওনাইটিস ইনফেকশন বা গর্ভফুলের আবরণের ইনফেকশন যদি আপনার ডেলিভারির আগে হয় তবে প্রসবের পর শিশুকে বুকের দুধ খাওয়াতে বাধা নেই এন্ডোমেট্রাইটিস বা জরায়ুর ইনফেকশন যদি আপনার ডেলিভারির পর হয় সেক্ষেত্রে তা শিশুর শরীরে ছড়ানোর আর সম্ভাবনা নেই সাধারণত সাইটোমেগালোভাইরাস ইনফেকশন এর ক্ষেত্রে বুকের দুধ খাওয়াতে নিষেধ নেই তবে এক্ষেত্রে আপনার প্রিটার্ম শিশু হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে এরপরই তাকে বুকের দুধ খাওয়াবেন সাধারণত আপনার জ্বর হলে বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ করার প্রয়োজন নেই তবে এক্ষেত্রে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে বুকের দুধের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কোনো অসুখে জ্বর হয়েছে কি নাঅনেক মায়েরই প্রশ্ন থাকে করোনা ভাইরাসে সংক্রমিত অবস্থায় সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো যাবে কি না সাধারণত কোভিড সংক্রমিত অবস্থায়ও সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ানো যায় তবে এক্ষেত্রে কিছু বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে যেমন— আপনি মুখে একটি ফেস মাস্ক পরে নিন বা মুখ ঢেকে নিন আপনার শিশুকে বা দুধের বোতল স্পর্শ করার আগে সাবান বা হ্যান্ডওয়াশ দিয়ে হাত ধুয়ে নিন শুধুমাত্র গর্ভাবস্থায়ই গর্ভবতী মায়েদের শরীরে হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রোপিন হরমোন তৈরি হয় তাই আলাদাভাবে একে গর্ভাবস্থার হরমোনও বলা হয় এ হরমোন গর্ভাবস্থায় প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল তৈরি করে সাধারণত গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে গর্ভবতী মায়ের রক্ত ও প্রস্রাবে এই হরমোন উচ্চ মাত্রায় পাওয়া যায় ধারণা করা হয় গর্ভাবস্থায় যে বমি বমি ভাব বা বমি হওয়ার সমস্যা দেখা দেয় তার পেছনে এই হরমোনের ভূমিকা রয়েছেপ্রথম ত্রৈমাসিকে সম্ভাব্য সন্তান ধারণের দিন থেকে ১১ দিন পর আপনার রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে এবং ১২ থেকে ১৪ দিন পর প্রস্রাবের পরীক্ষার মাধ্যমে চিকিৎসক আপনার শরীরে এ হরমোনের উপস্থিতি নির্ণয় করতে পারেনবাসায় প্রস্রাব পরীক্ষা করে গর্ভাবস্থা নির্ণয়ের যেই কিটটি পাওয়া যায় সেখানেও এই হরমোনের উপস্থিতি দেখা হয় গর্ভাবস্থার শুরুর দিকে প্রতি দুইদিনে অর্থাৎ প্রতি ৪৮ ঘন্টায় এর পরিমাণ দ্বিগুণ হতে থাকে প্রথম ৮ থেকে ১০ সপ্তাহে এ হরমোন সর্বোচ্চ পরিমাণে পৌঁছে এরপর ধীরে ধীরে কমতে থাকে[৪]আপনার গর্ভাবস্থা নির্ণয় করতে এই হরমোন সরাসরি ভূমিকা রাখে যেমন—আপনার শরীরে এই হরমোনের পরিমাণ ৫ mlU/mL এর কম হলে তা আপনার নেগেটিভ গর্ভাবস্থা বুঝায় এর মানে আপনি গর্ভধারণ করেননি আপনার শরীরে এই হরমোনের পরিমাণ ২৫ mlU/mL এর বেশি হলে পজিটিভ গর্ভাবস্থা বুঝায় অর্থাৎ আপনি গর্ভধারণ করেছেন আপনার শরীরে এই হরমোনের পরিমাণ ৬–২৪ mlU/mL হলে আপনার গর্ভাবস্থা নিশ্চিত করতে পুনরায় পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারেহিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রোপিন হরমোনের উপস্থিতি সাধারণভাবে গর্ভধারণ নির্দেশ করলেও এ হরমোন এর ওঠানামা আপনার গর্ভাবস্থার বিভিন্ন সমস্যা নির্দেশ করতে পারে যেমন—স্বাভাবিকের চেয়ে কম মাত্রা নির্দেশ করেগর্ভপাত এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বা জরায়ুর বাইরে গর্ভধারণ স্বাভাবিকের চেয়ে উচ্চমাত্রা নির্দেশ করে যমজ সন্তান বা একাধিক গর্ভধারণ মোলার প্রেগন্যান্সি অর্থাৎ যেসব ক্ষেত্রে আপনার গর্ভের শিশু কিংবা গর্ভফুল বা প্লাসেন্টা আপনার সুস্থ গর্ভাবস্থায় যতটুকু বেড়ে ওঠা দরকার ছিল ততটুকু বেড়ে ওঠে নাকখন নিয়মিত এই হরমোন এর পরিমাণ নির্ণয় করা প্রয়োজনসুস্থ ও স্বাভাবিক গর্ভধারণের ক্ষেত্রে আপনার নিয়মিত হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রোপিন এর পরিমাণ নির্ণয় করার প্রয়োজন হয় না তবে নিচের লক্ষণগুলো থাকলে আপনার চিকিৎসকের নির্দেশ মতো নিয়মিত এই হরমোন এর পরিমাণ নির্ণয় করতে হতে পারে—যোনিপথে রক্তপাত হলে তলপেটে বা জরায়ুতে তীব্র ব্যথা হলে এর আগে গর্ভপাতের ইতিহাস থাকলে এ হরমোনকে অনেকসময় হিউম্যান কোরিওনিক সোমাটোম্যামোট্রপিনও বলা হয় এটিও গর্ভাবস্থায় প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল থেকে তৈরি হয় নামের মতোই এটি মায়ের দুধ উৎপাদনের সাথে জড়িতএটি গর্ভাবস্থায় আপনার সন্তানকে পুষ্টি উপাদান সরবরাহে সাহায্য করে এবং সন্তান প্রসবের পর এ হরমোন স্তনের দুগ্ধ গ্রন্থিকে উদ্দীপ্ত করে এবং কলোস্ট্রাম নামের এন্টিবডি যুক্ত আঠালো পদার্থ তৈরি করে যা থেকে পরবর্তীতে মায়ের বুকের দুধ আসেকলোস্ট্রাম শালদুধ নামেও পরিচিতকখনো কখনো হিউম্যান প্ল্যাসেন্টাল ল্যাকটোজেন আর প্লাসেন্টাল গ্রোথ হরমোন নামক প্লাসেন্টার আরেকটি হরমোনের অস্বাভাবিকতা থেকে গর্ভাবস্থায় নারীদের গর্ভকালীন ডায়াবেটিস এবং গর্ভের শিশুর বৃদ্ধিজনিত সমস্যা দেখা দিতে পারে এ হরমোন নারীদের স্তনের বৃদ্ধি ও মাসিকের সূচনা করে সাধারণ সময়ে নারীদের ওভারি বা গর্ভাশয়ে এবং গর্ভাবস্থায় প্লাসেন্টা বা গর্ভফুলে এ হরমোন তৈরি হয়আপনার শরীরে সারাজীবন যে পরিমাণ ইস্ট্রোজেন হরমোন তৈরি হয় একটি গর্ভাবস্থায় তার চেয়েও বেশি পরিমাণ হরমোন তৈরি হয়ইস্ট্রোজেন হরমোন গর্ভাবস্থায় মূলত নিচের কাজগুলো করে—নতুন রক্তনালী তৈরি করে ও রক্ত সরবরাহ ব্যবস্থা মজবুত করেপুষ্টি উপাদান সরবরাহ করে বাড়ন্ত শিশুর বৃদ্ধিতে সহায়তা করেইস্ট্রোজেন ধীরে ধীরে বাড়ে এবং তৃতীয় ত্রৈমাসিকে সর্বোচ্চ হয় প্রথম ত্রৈমাসিকে হঠাৎ করে এ হরমোন বৃদ্ধি পাওয়ার কারণে বমি বমি ভাব হতে পারে এবং দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে দুগ্ধনালী বিকশিত করে স্তন বড় করেপড়ুন গর্ভাবস্থায় স্তনের পরিবর্তন সাধারণ সময়ে নারীদের ওভারি বা গর্ভাশয়ে এবং গর্ভাবস্থায় প্লাসেন্টা বা গর্ভফুলে এ হরমোন তৈরি হয়এ হরমোন নিষিক্ত ডিম্বাণু প্রতিস্থাপনের জন্য জরায়ুর প্রাচীরের পুরুত্ব বৃদ্ধি করতে সাহায্য করে শরীরের মাংসপেশি ও জয়েন্টগুলোকে ঢিলে করে দেয় শরীরের ভেতরের বিভিন্ন অংশকে বাড়তে সাহায্য করে যেমন স্বাভাবিক সময়ে একটি নাশপাতির সমান আকারের জরায়ুকে গর্ভাবস্থায় একটি পূর্ণাঙ্গ মানবশিশু ধারণ করতে প্রস্তুত করেপ্রোজেস্টেরন ও রিল্যাক্সিন হরমোন মিলে আপনার বেশ কিছু পরিবর্তন নিয়ে আসে যেমন—বুক জ্বালাপোড়াহজমে সমস্যা কোষ্ঠকাঠিন্যপেট ফাঁপা মায়েদের প্রজননে রিল্যাক্সিন হরমোন বড় ভূমিকা রাখে সাধারণত ডিম্বপাতের পর রিল্যাক্সিন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যায় যা আপনার জরায়ুর প্রাচীরকে সন্তানধারণের জন্য তৈরি করেগর্ভাবস্থায় রিল্যাক্সিন হরমোন জরায়ুর সংকোচনকে বাঁধা দেয় যার ফলে অকাল প্রসব হয় না এ হরমোন রক্তনালীকে প্রসারিত করে প্লাসেন্টায় রক্ত প্রবাহ করে এ ছাড়া এটি প্রসবের সময়ে তলপেটের হাড় ও লিগামেন্টকে প্রসারিত করে সারভাইকাল রাইপেনিং অর্থাৎ প্রসবের জন্য জরায়ুমুখকে নরম ও প্রসারিত করতে সহায়তা করে অক্সিটোসিন মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস অংশে তৈরি হয় এবং পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয়এ হরমোন সন্তান প্রসব ও ডেলিভারিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখেআপনার প্রসবের সময় অক্সিটোসিন হরমোন এর পরিমাণ বাড়ে তখন এ হরমোন জরায়ুর মাংসপেশির সংকোচনে উদ্দীপনা দেয় এবং প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামের একটি হরমোন তৈরিতেও উদ্দীপনা দেয় যা পরবর্তীতে জরায়ুর সংকোচনকে বাড়িয়ে দেয়[২৪]প্রসব যদি আপনাআপনি শুরু না হয় তবে অনেকসময় আপনাকে কৃত্রিমভাবে অক্সিটোসিন দেওয়া হতে পারেপ্রসবের পর অক্সিটোসিন আপনার জরায়ুকে স্বাভাবিক আকারে ফিরে আসতে এবং স্তনে দুধ আসতে সাহায্য করে নবজাতকের সাথে মায়ের ইমোশনাল বন্ডিং তৈরিতেও এই হরমোন ভূমিকা রাখেউপরের ৬টি হরমোন ছাড়াও আরও কিছু হরমোন এই আলোচনায় আসতে পারে সরাসরি গর্ভকালীন হরমোন হিসেবে গণ্য না হলেও গর্ভাবস্থা তৈরির পেছনে এদের ভূমিকা রয়েছে এ হরমোন মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে তৈরি হয়ে আপনার গর্ভাশয় বা ওভারিকে ডিম্বাণু ও ইস্ট্রোজেন হরমোন তৈরিতে উদ্দীপনা যোগায় এবং আপনার মাসিকের চক্র নিয়ন্ত্রণ করেগর্ভাবস্থার শুরু করতেই এই হরমোন প্রয়োজন এ হরমোন নিয়ে মজার ব্যাপার হচ্ছে আপনার শরীরে যদি এ হরমোনের পরিমাণ বেশি থাকে তবে তা আপনার যমজ সন্তান হবার সম্ভাবনা নির্দেশ করতে পারে লুটিনাইজিং হরমোনও আপনার পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় এবং ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন এর সাথে মিলে আপনার ডিম্বপাত এবং মাসিক চক্র নিয়ন্ত্রণ করে গর্ভাবস্থা একজন মায়ের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় গর্ভাবস্থার স্বাভাবিক কিছু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্টি হওয়া সমস্যা ছাড়া গর্ভবতী মায়েদের খুব কম ক্ষেত্রেই জটিলতা দেখা দেয়গর্ভাবস্থা একজন মায়ের জীবনে খুবই গুরুত্বপূর্ণ সময় গর্ভাবস্থার স্বাভাবিক কিছু পরিবর্তনের কারণে সৃষ্টি হওয়া সমস্যা ছাড়া গর্ভবতী মায়েদের খুব কম ক্ষেত্রেই জটিলতা দেখা দেয়তবে কিছু বিশেষ লক্ষণ নিয়ে আপনার আগে থেকেই জেনে নেওয়া দরকার কারণ এসব লক্ষণ আপনার ও আপনার গর্ভের শিশুর জন্য বিপজ্জনক হতে পারে এসব লক্ষণ দেখা গেলে তাৎক্ষণিক আপনার চিকিৎসার প্রয়োজন হবেএসব লক্ষণকে গর্ভাবস্থার বিপদ চিহ্ন বলা হয় এ লক্ষণগুলো জানা থাকলে মারাত্মক অবস্থায় পৌঁছানোর আগেই চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব হবে এবং গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর সুস্থতা নিশ্চিত করা যাবে গর্ভাবস্থার বেশ কিছু বিপদ চিহ্ন রয়েছে আপনি যদি বর্তমানে গর্ভবতী হোন কিংবা সম্প্রতি গর্ভবতী হয়ে থাকেন তবে এ লক্ষণগুলির ব্যাপারে বিশেষ নজর রাখতে হবে১ রক্তস্রাবগর্ভাবস্থার যেকোনো সময়ে যোনিপথে রক্তপাত হওয়া বিপদচিহ্ন নির্দেশ করে যেমন—আপনি যদি গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে যোনিপথে রক্তপাতের পাশাপাশি মাসিকের ব্যথার মতো ব্যথা তীব্রভাবে অনুভব করেন এবং জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন তবে সেটি এক্টোপিক প্রেগন্যান্সি বা জরায়ুর বাইরের গর্ভধারণের লক্ষণ হতে পারেপ্রথম ত্রৈমাসিকের শেষের দিকে কিংবা দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকের শুরুর দিকে পেট ব্যথাসহ রক্তপাত গর্ভপাত এর লক্ষণ হতে পারেতৃতীয় ত্রৈমাসিকে রক্তপাত প্লাসেন্টাল এবরাপশন এর কারণে হতে পারে যার ফলে প্রসবের আগেই আপনার প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল আলাদা হয়ে যায় এর ফলে গর্ভের শিশু মায়ের শরীর থেকে পর্যাপ্ত অক্সিজেন ও পুষ্টি উপাদান পায় না২ খিঁচুনিগর্ভাবস্থা প্রসবের সময় কিংবা প্রসবের পর খিঁচুনি হওয়া আপনার জন্য বিপদ চিহ্ন খিঁচুনি এক্লাম্পসিয়ার প্রধান লক্ষণ এক্লাম্পসিয়া গর্ভাবস্থার মারাত্মক একটি জটিলতা সঠিক সময়ে চিকিৎসা না নিলে এতে মা ও শিশু উভয়েরই ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা থাকে৩ মাথা ব্যথা ও ঝাপসা দেখাগর্ভাবস্থায় যেকোনো সময় আপনার মাথা ব্যথা হলে যদি সেটি আপনার কাছে খুব তীব্র মনে হয় এবং মাথা ব্যথার চিকিৎসা নেওয়ার পরও যদি তা না সারে কিংবা সময়ের সাথে সাথে আরও খারাপ হতে থাকে তাহলে এটিও একটি বিপজ্জনক অবস্থা নির্দেশ করতে পারেমাথা ব্যথার পাশাপাশি চোখে ঝাপসা দেখা মাথা ঘুরানো ও শরীরে পানি আসার মতো সমস্যাও হতে পারে এ ধরনের তীব্র মাথা ব্যথা চোখে ঝাপসা দেখা ও শরীরে পানি আসা প্রিএক্লাম্পসিয়ার অন্যতম লক্ষণ সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না নিলে এর থেকে মারাত্মক পরিণতি হতে পারে৪ ভীষণ জ্বরগর্ভাবস্থায় আপনার জ্বর হলে অর্থাৎ আপনার শরীরের তাপমাত্রা ১০০৪° ফারেনহাইট বা ৩৮°সেন্টিগ্রেডের উপরে হলে এটিও একটি বিপদ চিহ্ন গর্ভাবস্থায় বা প্রসবের পর পর একটানা তিন দিনের বেশি জ্বর থাকলে কিংবা যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব নিঃসৃত হলে তা সাধারণত শরীরে কোনো ধরনের ইনফেকশনের উপস্থিতি নির্দেশ করে গর্ভাবস্থায় জ্বর মা ও শিশু উভয়ের জন্য ক্ষতিকর হতে পারেকিছু গবেষণা থেকে দেখা যায় গর্ভাবস্থায় জ্বর হলে তা গর্ভপাত বা মিসক্যারেজ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে তবে সাম্প্রতিক একটি গবেষণায় আবার গর্ভাবস্থার ১৬ সপ্তাহ পর্যন্ত জ্বরের সাথে গর্ভপাত বৃদ্ধি পাওয়ার কোনো সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায়নিগর্ভাবস্থার প্রথমদিকে জ্বর আসার সাথে গর্ভের শিশুর কিছু জন্মগত ত্রুটি দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা কিছুটা বেড়ে যাওয়ার সম্পর্ক পাওয়া গিয়েছেগর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে বা ১২তম সপ্তাহের পর জ্বর আসলে গর্ভের শিশুর অটিজম বা অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বাড়তে পারে গর্ভাবস্থার এই সময়ের পর তিনবার বা তার বেশি জ্বর আসলে এই ঝুঁকি অনেকাংশে বেড়ে যেতে পারেকিছু কিছু গবেষণায় এসব প্রমাণ পাওয়া গেলেও আবার কিছু গবেষণায় গর্ভাবস্থায় জ্বরের সাথে এসব জটিলতার সম্পর্ক খুঁজে পাওয়া যায় না তাই এ বিষয়ে আরও গবেষণার অবকাশ রয়েছেতবে যেকোনো ক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থায় জ্বর আসলে দ্রুত তা কমানোর ব্যবস্থা করা ও সময়মতো ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি এতে করে গর্ভবতী মা ও গর্ভের শিশুর জ্বরের কারণে কোনো ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকলে তা এড়ানো সম্ভব হবে৫ বিলম্বিত প্রসবআপনার প্রসবের ব্যথা যদি ১২ ঘন্টার বেশি থাকে তাহলে একে বিলম্বিত প্রসব বলে বিলম্বিত প্রসবও একটি বিপদ চিহ্ন বিলম্বিত প্রসবের সময় মাথা ছাড়া বাচ্চার অন্য যেকোনো অঙ্গ প্রথমে বের হতে পারে বিলম্বিত প্রসব হলে জন্মের পর শিশুর শ্বাসকষ্ট ও খিঁচুনি হতে পারে উপরের বিপদ চিহ্নগুলোর পাশাপাশি নিচের উপসর্গগুলির ব্যাপারেও সতর্ক থাকতে হবে—মাথা ঘোরা বা জ্ঞান হারানো ডেলিভারির সম্ভাব্য দিনের আগেই পানি ভেঙে যাওয়া অতিরিক্ত বমি হওয়া এবং একদমই খেতে না পারা গর্ভের শিশুর নড়াচড়া কমে যাওয়া বা একদমই নড়াচড়া না হওয়া আপনার হাত বা মুখমণ্ডল অত্যধিক ফুলে যাওয়া বা শরীরে পানি আসা শ্বাস নিতে সমস্যা হও বুকে ব্যথা কিংবা বুক ধড়ফড় করা অতিরিক্ত ক্লান্তিগর্ভকালীন সময়ের পাশাপাশি সন্তান প্রসবের পরও মায়ের শারীরিক অবস্থার দিকে লক্ষ রাখা জরুরি প্রসবের পর নিচের উপসর্গগুলির দিকে লক্ষ রাখুন—প্রসবের পর যোনি থেকে ভারী রক্তপাত বা স্রাব নিঃসরণ ডিপ্রেশন স্তনের বোঁটায় ফাটল ধরা বা লাল হয়ে যাওয়া গর্ভাবস্থার বিপদ চিহ্নগুলো হয়তো সবসময় আগে থেকে টের পাওয়া সম্ভব নয় তবে গর্ভাবস্থায় নিচের সহজ পরামর্শগুলো মেনে চললে এসব বিপদ চিহ্ন থেকে আপনি অনেকটাই নিরাপদ থাকতে পারবেন—১ নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা করান গর্ভাবস্থায় আপনার ও আপনার গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণের জন্য নিয়মিত শারীরিক পরীক্ষা খুবই প্রয়োজনীয় গর্ভাবস্থায় প্রথম ৩০ সপ্তাহে বা ৭ মাসে ন্যূনতম প্রতি মাসে একবার এবং ৩০ সপ্তাহের পর প্রতি সপ্তাহে একবার করে আপনার ডাক্তার দেখানো উচিতপ্রতি চেকআপে ডাক্তার আপনার ওজন রক্তশূন্যতা পায়ে পানি আসা রক্তচাপ এবং গর্ভের ভেতরে শিশুর পজিশন বা অবস্থান নিশ্চিত করবেন সেই সাথে আপনার যদি গর্ভকালীন কোনো স্বাস্থ্য জটিলতা (যেমন গর্ভকালীন ডায়াবেটিস প্রিএক্লাম্পসিয়া) থেকে থাকে চিকিৎসক সেগুলো চিহ্নিত করতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে পারবেন২ সুষম খাবার গ্রহণ করুন গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে স্বাভাবিকের চেয়ে কিছুটা বেশি পরিমাণ খাবার দরকার হয় কারণ এসময় আপনার পাশাপাশি আপনার গর্ভের শিশুর পুষ্টিও আপনার উপর নির্ভরশীল গর্ভাবস্থায় সুষম খাবার গ্রহণ করুননিয়মিত বিরতিতে সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খাবেন প্রয়োজনে দৈনিক তিনবেলা বেশি করে খাবার না খেয়ে অল্প অল্প করে ছয় বার খান অথবা দৈনিক তিনবার খাওয়ার পাশাপাশি ক্ষুধা লাগলে পরিমিত পরিমাণে স্বাস্থ্যকর ও হালকা নাস্তা খেতে পারেনএ ছাড়া অবশ্যই সকালে ঠিকমতো নাস্তা খাওয়ার চেষ্টা করবেন রাতে ঘুমানোর আগে কোনো হালকা খাবার খেয়ে নিবেন এক গ্লাস কুসুম গরম দুধ খেয়ে ঘুমাতে যেতে পারেন দুধ ভালো ঘুমে সাহায্য করেএর পাশাপাশি প্রয়োজন হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ভিটামিন ফলিক এসিড আয়রন প্রোটিন ও ক্যালসিয়াম এর সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে পারেন৩ সময়মতো ধনুষ্টংকার বা টিটেনাস এর টিকা গ্রহণ করুন আপনার ডেলিভারির সময়ে নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে গর্ভাবস্থায় টিটি বা টিটেনাস টিকা নেওয়া প্রয়োজন তবে আগে থেকে টিটেনাসের ৫টি টিকার ডোজ সম্পন্ন থাকলে আর গর্ভাবস্থায় এই টিকা নেওয়ার প্রয়োজন নেইআগে যদি কোনো ডোজ না নিয়ে থাকেন সেক্ষেত্রে গর্ভাবস্থায় ৫ মাসের পর ১ মাসের ব্যবধানে পর পর দুটি টিটি টিকা নিন আর যদি পূর্বে দুই ডোজ টিকা নেওয়া থাকে তাহলে প্রতি গর্ভাবস্থায় মাত্র একটি বুস্টার ডোজ নিন আপনার ডাক্তার বা স্বাস্থ্যকর্মী এ বিষয়ে আপনাকে সাহায্য করতে পারবেন৪ পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিন গর্ভাবস্থায় যেকোনো ভারী কাজ এড়িয়ে চলুন গর্ভাবস্থায় সুস্থ থাকার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়া খুবই জরুরি রাতে অন্তত ৭–৯ ঘণ্টা ভালোমতো ঘুমানোর চেষ্টা করুন প্রয়োজনে দিনের বেলাও কমপক্ষে এক ঘন্টা বিশ্রাম নিতে পারেনঘুমের একটি রুটিন মেনে চলুন প্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে ঘুমাতে যাওয়া এবং একই সময়ে ঘুম থেকে ওঠার চেষ্টা করুন খুব বেশি অথবা খুব কম না ঘুমিয়ে নিয়মিত পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানোর চেষ্টা করুন৫ পূর্বের স্বাস্থ্য সমস্যা বা রোগ নিয়ন্ত্রণে রাখুন আপনার আগে থেকেই ছিল এমন কিছু অসুখ নিয়ন্ত্রণে না রাখলে গর্ভাবস্থায় জটিলতা তৈরি করতে পারে যেমন—উচ্চ রক্তচাপ হৃদরোগ ডায়াবেটিস এইডস অথবা যৌনবাহিত অন্য কোনো রোগ অটোইমিউন রোগদৈনন্দিন কাজ ও অভ্যাসের পরিবর্তনের মাধ্যমে এসব রোগ নিয়ন্ত্রণ করা গেলে গর্ভাবস্থায় জটিলতা কমানো সম্ভব৬ প্রসব কালীন খরচের জন্য সঞ্চয় করুন গর্ভাবস্থায় অনাকাঙ্ক্ষিত জটিলতার কারণে আপনার অতিরিক্ত খরচও হতে পারে এজন্য আগে থেকেই প্রসবকালীন খরচের জন্য সঞ্চয় করুন গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের সময়ে এমন অনেক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যেকারণে গর্ভের শিশুকে সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি করানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয় এমন অনেকগুলো জটিলতার পেছনে রয়েছে কিছু পরিচিত ও প্রতিরোধযোগ্য কারণগর্ভাবস্থায় ও প্রসবের সময়ে এমন অনেক জটিলতা সৃষ্টি হতে পারে যেকারণে গর্ভের শিশুকে সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি করানোর সিদ্ধান্ত নিতে হয় এমন অনেকগুলো জটিলতার পেছনে রয়েছে কিছু পরিচিত ও প্রতিরোধযোগ্য কারণএসব কারণের মধ্যে অন্যতম হলো গর্ভধারণের আগে মায়ের অতিরিক্ত ওজন ও গর্ভাবস্থায় দ্রুত ওজন বাড়া ৩৫ বছর বয়সের পরে গর্ভধারণ ডায়াবেটিস তথা রক্তে সুগার বেশি থাকা ধূমপান ও গর্ভবতীর উচ্চ রক্তচাপজীবনধারায় সহজ কিছু পরিবর্তন আনার মাধ্যমে এসব কারণ অনেকাংশে প্রতিরোধ করা সম্ভব হতে পারে এতে জটিলতার ঝুঁকি কমে ফলে সিজারের প্রয়োজন হওয়ার সম্ভাবনা কমে আসে এভাবে জীবনধারার এই বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণে রাখলে তা নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করতে পারেএখানে নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়ানোর এবং নিরাপদ ডেলিভারিতে সহায়তা করার জন্য কিছু কার্যকর উপদেশ তুলে ধরা হয়েছে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে যারা গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করেন তাদের নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বেড়ে যায় সিজার ও অন্যান্য যন্ত্রপাতির সাহায্যে ডেলিভারির প্রয়োজন কম হয় সেই সাথে সময়ের আগে সন্তান প্রসব হওয়া ও কম ওজনের শিশু জন্মদানের ঘটনাও কমে আসেনিয়মিত ব্যায়াম করলে তা গর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বাড়া প্রতিরোধ করে অতিরিক্ত ওজন বাড়লে গর্ভের শিশু আকারে বেশি বড় হওয়ার এবং সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারির ঝুঁকি বেড়ে যায় গর্ভাবস্থায় কতটুকু ওজন বাড়া উচিতব্যায়াম গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ প্রিএক্লাম্পসিয়া ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কমাতেও সাহায্য করে এসব জটিলতাও সিজারের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারেনরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়ানোর পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করলে আরও কিছু উপকারিতা পাওয়া যায় যেমন—পেশি শক্তিশালী করে তোলার মাধ্যমে কোমর ব্যথাসহ গর্ভকালীন বিভিন্ন ধরনের ব্যথা কমানো কোষ্ঠকাঠিন্য ও পেট ফাঁপা কমানো শরীরের শক্তি ও কর্মক্ষমতা বাড়িয়ে দেও মনমেজাজ ফুরফুরে রাখা ভালোমতো ঘুমাতে সাহায্য করাগর্ভবতী নারীদের জন্য সপ্তাহে ২৫ ঘণ্টা মাঝারি তীব্রতার অ্যারোবিক শরীরচর্চাকে আদর্শ ধরা হয় যেমন দ্রুত হাঁটা বাগান করা সাঁতার কাটা নাচ ও সাইকেল চালানো এমন ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে দ্রুত হাঁটা বাগান করা সাঁতার কাটা নাচ ও সাইকেল চালানোগর্ভাবস্থায় আপনার পছন্দমতো এমন যেকোনো ব্যায়াম বেছে নিতে পারেন এ ছাড়া আগে থেকে ভারী ব্যায়াম করার অভ্যাস থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেটাও চালিয়ে যেতে পারেনআপনি সপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট ধরে ব্যায়াম করলেই এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবেন আবার চাইলে দিনে ১০ মিনিট ধরে কয়েক ভাগে ব্যায়াম করে নিতে পারেন এই রুটিনের পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার স্বাচ্ছন্দ্যের ওপরআপনার গর্ভধারণের আগে থেকে ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলেও কোনো সমস্যা নেই গর্ভাবস্থায় নিশ্চিন্তে ব্যায়াম করা শুরু করতে পারবেন তবে এক্ষেত্রে ধীরে ধীরে শুরু করে সময়ের সাথে আপনার সহনশীলতা বাড়ানসহজ কিছু কাজ প্রতিদিনের রুটিনে যোগ করতে পারেন যেমন বাজারে কিংবা দোকানে গেলে একটু বেশি ঘুরে হেঁটে যাওয়ার রাস্তাটি বেছে নিতে পারেন লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি বেছে নিন মূল কথা হলো ব্যায়ামের সব ধরনের উপকার পেতে প্রতিদিন একটু একটু করে শরীরচর্চার পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন এবং এটি নিয়মিত রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসুনতবে এসময়ে নতুন করে ভারী ধরনের কোনো ব্যায়াম শুরু না করাই ভালো সেই সাথে যেসব এক্সারসাইজ করলে আপনার পড়ে যাওয়ার অথবা আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি থাকে (যেমন বক্সিং ব্যাডমিন্টন ও কারাতে) সেগুলো এসময়ে এড়িয়ে চলবেনগর্ভাবস্থায় ঠিক কোন ধরনের এক্সারসাইজগুলো আপনার জন্য নিরাপদ হবে তা আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলে নির্ধারণ করে নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করার সময়ে স্বাভাবিক সহ্যক্ষমতার বাইরে ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন আপনার কোনো গর্ভকালীন জটিলতা থাকলে ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মতামত মেনে চলুনপড়ুন গর্ভাবস্থার জন্য ব্যায়াম গর্ভধারণ করলেই যে আপনাকে দুইজনের পরিমাণে খাবার খেতে হবে—এমনটা নয় স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অস্বাস্থ্যকর অতিরিক্ত চিনি ও তেলচর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া যতটা সম্ভব বাদ দিয়ে দিন আপনার জন্য সঠিক পরিমাণে সুষম খাবার খান প্রচুর পানি পান করুন পর্যাপ্ত শাকসবজি ও ফলমূল খানগর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে সাধারণত বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না তবে এর পরের মাসগুলোতে আপনাকে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা বেশি খাবার খেতে হবে গর্ভাবস্থায় আপনি কতটুকু অতিরিক্ত খাবার খাবেন সেটি খাবারে থাকা ক্যালরির সাহায্যে হিসাব করা যায়একজন স্বাভাবিক ওজনের গর্ভবতীর দ্বিতীয় ত্রৈমাসিকে প্রথম ত্রৈমাসিকের চেয়ে প্রতিদিন প্রায় ৩৪০ ক্যালরি পরিমাণ অতিরিক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজন অন্যদিকে একজন স্বাভাবিক ওজনের গর্ভবতীকে তৃতীয় ত্রৈমাসিকে অন্যান্য সময়ের তুলনায় অতিরিক্ত প্রায় ৪৫০ ক্যালরির খাবার খেতে হবে[৮]তবে আপনার ওজন কমবেশি হলে আরেকটু বেশিকম পরিমাণে অতিরিক্ত খাবার খেতে হবে যমজ শিশু গর্ভধারণ করলেও হিসাব কিছুটা ভিন্ন হবেপ্রয়োজন মাফিক পুষ্টিকর খাবার খেলে আপনার গর্ভকালীন বাড়তি ওজন স্বাভাবিক সীমার মধ্যে থাকবে গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে আপনি কী ধরনের খাবার খাচ্ছেন সে বিষয়ে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিন গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত চেকআপে গিয়েছেন এমন নারীদের তুলনায় যারা চেকআপে অনিয়মিত ছিলেন তাদের গর্ভকালীন ও প্রসব সংক্রান্ত বিভিন্ন জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি এসব জটিলতা সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারিসহ প্রসবের সময়ে সমস্যা হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারেনিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপে গেলে গর্ভবতী ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্য সম্পর্কে নানান গুরুত্বপূর্ণ তথ্য উঠে আসে ফলে এসব জটিলতা আগেভাগে ধরে ফেলে চিকিৎসা শুরু করা সম্ভব হয় এভাবে নিয়মিত চেকআপ নরমাল ডেলিভারির সম্ভাবনা বাড়াতে সাহায্য করতে পারে শুধু তাই নয় চেকআপের কারণে গর্ভধারণ ও প্রসব সংক্রান্ত জটিলতায় মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার বর্তমানে অনেক কমে এসেছে ১৯৯০ সালেই বাংলাদেশে প্রতি লাখে মাতৃমৃত্যুর হার ছিল ৫৮১সেটা ২০১৭ সালে নেমে এসেছে ১৭৩ একইভাবে আগের তুলনায় শিশুমৃত্যুর হারও অনেক কমে এসেছে ১৯৯০ সালে যেখানে হাজারে ৬৫ নবজাতক শিশু মারা যেত তা ২০২০ এ কমে এসেছে ১৭তে এই মৃত্যুহার এতখানি কমে আসার পেছনে অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে নিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপগর্ভধারণের পরে যত দ্রুত সম্ভব গর্ভকালীন চেকআপ শুরু করা প্রয়োজন যেকোনো অবস্থাতেই ১২তম সপ্তাহের আগে আপনার প্রথম চেকআপ করিয়ে ফেলতে হবে তাই আপনি যে গর্ভবতী সেটি জানার পর যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ডাক্তারের পরামর্শ নিবেনডাক্তার আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের অবস্থার ভিত্তিতে আপনার জন্য ব্যক্তিগত একটি পরিকল্পনা তৈরি করে দিতে পারেন এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে গর্ভকালীন সময়ে আপনার চলাফেরা ও খাওয়াদাওয়া কেমন হবে সেই বিষয়ে দিকনির্দেশনা দেওয়া হবেএ ছাড়া আপনার ও গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য গভীরভাবে পর্যবেক্ষণের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হবে গর্ভাবস্থা শেষে একজন সুস্থ মা ও সুস্থ শিশুর ডেলিভারির জন্য এসব তথ্য যত দ্রুত জানা যায় ততই ভালোপড়ুন কীভাবে গর্ভকালীন চেকআপ করাবেন মা ও গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে গর্ভাবস্থায় সঠিক মাত্রায় ওজন বৃদ্ধি খুব গুরুত্বপূর্ণ সঠিক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ওজন বৃদ্ধির হার কম কিংবা বেশি হলে সেটি মা ও গর্ভের শিশুর জন্য বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারেএসব জটিলতার কারণে সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি ও শিশুর জন্মের পরে বিশেষায়িত চিকিৎসার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যেতে পারে এমনকি শিশুর জন্মের বহু বছর পরেও এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে যেতে পারেগর্ভাবস্থায় কতটুকু ওজন বাড়লে তা মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে সেই হিসাবটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম গর্ভধারণের আগে মায়ের ওজন ও শারীরিক গঠন কেমন ছিল তার ওপর ভিত্তি করে গর্ভকালীন ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অনেকটাই কমবেশি হতে পারেএসময়ে খুব দ্রুত ওজন না বাড়িয়ে ধীরে ধীরে বাড়ানোর লক্ষ্য রাখা উচিত গর্ভধারণের ১৩তম সপ্তাহের পর থেকে ধীরে ধীরে এবং নির্দিষ্ট হারে আপনার ওজন বাড়তে থাকলে তা আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য সবচেয়ে ভালো হয় গর্ভাবস্থায় ওজন কতটুকু বাড়া উচিতগর্ভাবস্থার শুরু থেকেই নিয়মিত নিজের ওজন মাপুন এতে করে আপনার ওজন কী হারে বাড়ছে সেটি সহজেই বুঝতে পারবেন যদি প্রতি সপ্তাহে ওজন মাপেন তাহলে সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট দিন ও সময় বেছে নিতে পারেন যেমন প্রতি শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রস্রাব করার পর খালি পেটে ওজন মাপতে পারেনআপনার ওজন ঠিকঠাক মতো বাড়ছে কি না সেই বিষয়ে গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে ডাক্তারের মতামত নিন ওজন বৃদ্ধিতে কোনো ধরনের সমস্যা থাকলে খাবার তালিকা ও ব্যায়াম নিয়ে ডাক্তারের সাথে আলোচনা করে আপনার জন্য একটি সঠিক পরিকল্পনা তৈরি করে নিন গর্ভাবস্থায় আপনার শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য অনেক ধরনের চ্যালেঞ্জের ভেতর দিয়ে যায় এর মধ্যে যতটা সম্ভব মানসিকভাবে চাপমুক্ত থাকার চেষ্টা করবেন এই কাজটা সবসময় সহজ হয় না অনেক বেশি চাপের মধ্যে থাকলে তা আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের ওপর বিভিন্ন ধরনের অস্বাস্থ্যকর প্রভাব ফেলতে পারেএসময়ে মানসিক অবস্থা নিয়ে পরিবারের অন্য সদস্যদের সাথে খোলাখুলিভাবে কথা বলুন আপনজনদের সাথে চাপ ভাগাভাগি করে নিলে তা মোকাবেলা করা সহজ হতে পারে সেই সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিনইয়োগা বা যোগব্যায়াম শ্বাসের ব্যায়াম করুন ডায়েরি লিখতে পারেন পছন্দের গান শুনতে পারেন মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখলে তা কেবল আপনার গর্ভাবস্থায় নয় বরং ডেলিভারির সময়েও সাহায্য করতে পারে এসব পরামর্শের মধ্যে রয়েছে—গর্ভধারণের পরিকল্পনা শুরু করার পর থেকে নিয়মিত আয়রনফলিক এসিড খাওয়া কাজের জায়গায় একটানা বেশিক্ষণ দাঁড়িয়ে না থাকা এবং ভারী জিনিস বহন করা এড়িয়ে চলা পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া রাতে ৭৯ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করা গর্ভাবস্থার বিপদচিহ্নগুলো জেনে রাখা এবং কোনোটি দেখা দিলে দ্রুত হাসপাতালে যাওয়া অতিরিক্ত ক্যাফেইন জাতীয় পানীয় এড়িয়ে চলা গর্ভকালীন সময়ে দৈনিক ২০০ মিলিগ্রামের বেশি ক্যাফেইন জাতীয় খাবার অথবা পানীয় খাওয়া এড়িয়ে চলবেন সাধারণত ২ কাপ কফি কিংবা ২–৩ কাপ চায়েই এই পরিমাণ ক্যাফেইন থাকতে পারে ধূমপান ও মদপান বাদ দেওয়া কোন আমাদের দুই পায়ের মাঝখানে একটা পেশিবহুল পর্দার মতো অংশ থাকে একে পেলভিক ফ্লোর বলা হয় এটি জরায়ু মূত্রথলি ও নাড়িভুঁড়িকে সঠিক স্থানে ধরে রাখতে সাহায্য করে বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় বাড়ন্ত জরায়ুকে সাপোর্ট দেয়প্রসবের সময়ও এই পেশিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কোনো কারণে পেলভিক ফ্লোরের পেশি দুর্বল হয়ে গেলে হাঁচি কাশি অথবা চাপ দিয়ে মলত্যাগ করার সময় কয়েক ফোঁটা প্রস্রাব বেরিয়ে আসার সমস্যাসহ নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে নরমাল ডেলিভারির পরে অনেকেরই এই সমস্যা দেখা দেয় আগে থেকে নিয়মিত পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম করলে তা এই ধরনের সমস্যা এড়াতে সাহায্য করেপেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম অনেকের কাছে কেগেল এক্সারসাইজ বা পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজ নামে পরিচিত এই ব্যায়ামটি দাঁড়িয়ে বসে অথবা শুয়ে যেকোনো ভাবেই করা যায়পড়ুন কেগেল এক্সারসাইজ কিভাবে করে ব্যথার কারণে অনেকেই নরমাল ডেলিভারি করাতে ভয় পান কেউ কেউ নরমাল ডেলিভারির চেষ্টা শুরু করলেও পরে স্বেচ্ছায় সিজার করানোর সিদ্ধান্ত নেন এটি প্রতিরোধে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে পেরিনিয়াল ম্যাসাজ করাতে পারেনএতে যোনিপথের ২–৩ সেন্টিমিটার ভেতরে আঙুল ঢুকিয়ে যোনি ও পায়ুর মাঝামাঝি পেশিতে নির্দিষ্ট নিয়মে ম্যাসাজ করা হয় গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই ম্যাসাজ ডেলিভারি জনিত যোনিপথের ব্যথা এপিসিওটোমি ও যোনিপথে সেলাইয়ের প্রয়োজনীয়তা কমাতে সাহায্য করতে পারে ডেলিভারির সময়ে আপনার শরীরের বিশেষ করে প্রসবের রাস্তার ওপর অনেক ধকল যায় তাই ডেলিভারির পর শরীরের সঠিক যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ নিচে এ সম্পর্কে সহজ কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়েছে এ ছাড়া হাসপাতালে ডেলিভারি হলে আপনার ছুটির কাগজে বা ছাড়পত্রে এই সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া থাকবে সেগুলোও মেনে চলবেন সেই সাথে প্রসবের পরে শিডিউল অনুযায়ী অন্তত ৪ বার ডাক্তার দেখানডেলিভারির সময়ে আপনার শরীরের বিশেষ করে প্রসবের রাস্তার ওপর অনেক ধকল যায় তাই ডেলিভারির পর শরীরের সঠিক যত্ন নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ নিচে এ সম্পর্কে সহজ কিছু পরামর্শ তুলে ধরা হয়েছে এ ছাড়া হাসপাতালে ডেলিভারি হলে আপনার ছুটির কাগজে বা ছাড়পত্রে এই সংক্রান্ত বিভিন্ন পরামর্শ দেওয়া থাকবে সেগুলোও মেনে চলবেন সেই সাথে প্রসবের পরে শিডিউল অনুযায়ী অন্তত ৪ বার ডাক্তার দেখান প্রসবের পর প্রথম কিছুদিন যোনিপথে রক্তমিশ্রিত স্রাব যেতে পারে এসময়ে আরামদায়ক স্যানিটারি প্যাড বা ম্যাটারনিটি প্যাড ব্যবহার করুন উল্লেখ্য ট্যামপন বা যোনিপথে ঢোকাতে হয় এমন পণ্য ব্যবহার করা থেকে বিরত থাকুন কারণ তা ইনফেকশন ঘটাতে পারেভারী রক্তপাত হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন ঘন্টায় দুইটা প্যাড যদি রক্তে ভরে যায় আর ১–২ ঘন্টার বেশি সময় ধরে এমন রক্তপাত চলতে থাকে তাহলে সেটাকে ভারী রক্তপাত হিসেবে ধরা হয় বিশেষ করে ভারী রক্তপাতের সাথে জ্বর তলপেটে ব্যথা অথবা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব গেলে দেরি না করে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া উচিত এটি কোনো ইনফেকশনের লক্ষণ হতে পারে কতদিন পর সহবাস করতে পারবেন সেই বিষয়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন অনেক ডাক্তার দেড় মাস বা ছয় সপ্তাহ সহবাস থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেন শরীরকে আগের অবস্থায় ফিরে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট বিরতি না দিয়ে ডেলিভারির পর খুব তাড়াতাড়ি সহবাস করলে ইনফেকশন হতে পারে ডেলিভারির পর সাধারণত দেড় মাস ভারী কাজ থেকে বিরত থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় তবে হালকা থেকে মাঝারি তীব্রতার শরীরচর্চা করতে সাধারণত কোনো বাধা নেই যোনিপথে বা সেলাই এর জায়গায় ব্যথা থাকলে বরফের সেক লাগাতে পারেন এজন্য একটা ছোটো তোয়ালে বা কাপড়ের টুকরায় বরফ পেঁচিয়ে নিন এ ছাড়া একটা বড় গামলায় কুসুম গরম পানি নিয়ে তার ওপর ৩–৫ মিনিট ধরে বসে থাকতে পারেন এভাবে গরম পানির সেঁক নিলে আপনার আরাম লাগতে পারেএতেও ব্যথা না কমলে ব্যথানাশক হিসেবে প্যারাসিটামল অথবা আইবুপ্রোফেন বেছে নিতে পারেন এগুলো ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ তবে আপনার আগে থেকে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে কিংবা এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিন এ ছাড়া কাটা স্থানে ডাক্তারের পরামর্শে ব্যথা কমানোর বা অবশ করার জেল ব্যবহার করতে পারেনশিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালেও প্যারাসিটামল ও আইবুপ্রোফেন সেবন করা যায় তবে সাধারণত অ্যাসপিরিন ও কোডেইন জাতীয় ঔষধ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয় কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে নিয়মিত বেশি বেশি ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার ও পানি খাবেন এর পাশাপাশি পায়খানা নরম করতে প্রয়োজনে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ইসবগুলের ভুসি অথবা ল্যাকটুলোজ জাতীয় ঔষধ খেতে পারেন ডেলিভারির সময়ে যোনির সাইড কাটা হলে সেলাই এর জায়গা পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখুন প্রতিবার পায়খানাপ্রস্রাব করার পর জায়গাটা ভালোমতো ধুয়ে টিস্যু অথবা একটা পরিষ্কার শুকনো কাপড় দিয়ে মুছে নিন ডেলিভারির পরে কয়েকদিন বা কয়েক সপ্তাহ হাঁচি কাশি ও হাসির সময়ে কিছুটা প্রস্রাব বেরিয়ে কাপড় নষ্ট হয়ে যেতে পারে এটা সাধারণত সময়ের সাথে ঠিক হয়ে যায় এই সমস্যা মোকাবেলায় প্যাড ব্যবহার করুন পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম বা কেগেল ব্যায়াম করুন—এটা প্রস্রাব ধরে রাখতে সাহায্য করতে পারে নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয়নরমাল ডেলিভারি কত সপ্তাহে হয়গর্ভাবস্থার ৩৭তম সপ্তাহ পূর্ণ হলে শিশুকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় টার্ম বেবি শিশু এর আগে জন্মগ্রহণ করলে তাকে অকাল প্রসব ধরা হয় টার্ম পূর্ণ হওয়ার পরে অর্থাৎ গর্ভকালীন ৩৭তম সপ্তাহ থেকে ৪২তম সপ্তাহের মধ্যে নরমাল ডেলিভারি হলে তা মা ও গর্ভের শিশুর জন্য সবচেয়ে নিরাপদউল্লেখ্য টার্ম বেবিদের মধ্যে ৩৯তম–৪১তম সপ্তাহে পৌঁছানো শিশুদের ফুল টার্ম বা পরিপূরণ টার্ম বলে বিবেচনা করা হয় গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে এই বয়সের আগে অথবা পরে ডেলিভারি হওয়া শিশুদের গর্ভকালীন ও প্রসবসংক্রান্ত জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা তুলনামুলক বেশিতাই আপনার ডাক্তারের সাথে ডেলিভারির পরিকল্পনা তৈরি করার সময়ে এই বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করে আগেভাগে সিদ্ধান্ত নিয়ে রাখতে পারেননরমাল ডেলিভারির জন্য বাচ্চার ওজন কত হওয়া প্রয়োজনশিশু আকারে বড় হলে নরমাল ডেলিভারি করা কঠিন হয়ে পড়ে সাধারণত জন্মের সময়ে একটি সুস্থ বাচ্চার ওজন ২৫ থেকে ৪ কেজির মধ্যে হয়ে থাকে মায়ের প্রসবের রাস্তা যথেষ্ট প্রশস্ত হলে এবং কোনো জটিলতা না থাকলে এই ওজনের শিশুর নরমাল ডেলিভারি করা যায়কিন্তু ৪ কেজির বেশি ওজনের শিশু আকারে স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত বড় হয়[৪] তাই নরমাল ডেলিভারির ফলে জটিলতার ঝুঁকি বেড়ে যায় এবং সিজারের প্রয়োজনীয়তা বেড়ে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকেপ্রথমবার সিজার করলে পরের বার কি নরমাল ডেলিভারি সম্ভবঅনেকে ধারণা করেন যে একবার সিজারের মাধ্যমে ডেলিভারি করালে পরবর্তীতেও কেবল সিজারই করাতে হবে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব হবে না তবে এই ধারণাটি ভুল আপনি যদি সুস্থ ও ফিট থাকেন তাহলে ডেলিভারির জন্য সাধারণ ডেলিভারি অথবা পরিকল্পিত সিজারের মধ্যে যেকোনো একটি পদ্ধতি বেছে নিতে পারেন এক্ষেত্রে দুটি পদ্ধতিই নিরাপদ ঝুঁকিও খুব সীমিত[৫]প্রথম সন্তান সিজারের মাধ্যমে হয়েছে পরবর্তী বা বর্তমান গর্ভধারণে কোনো জটিলতা হয়নি এবং প্রাকৃতিকভাবেই প্রসববেদনা উঠেছে—এমন নারীদের প্রতি ৪ জনের মধ্যে ৩ জনই যোনিপথে সন্তান প্রসব করেন যদি আপনার দ্বিতীয় গর্ভাবস্থায় সিজার করার মতো কোনো জটিলতা না থাকে সেক্ষেত্রে নরমাল ডেলিভারি করা সম্ভবপড়ুন সিজারের পর পুনরায় সন্তান জন্মদানকত বয়স পর্যন্ত নরমাল ডেলিভারি সম্ভবএর উত্তর নির্দিষ্টভাবে বলা সম্ভব নয় কারণ এটি একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম হতে পারে তবে সাধারণত ৩৫ বছর বয়সের পরে প্রথমবারের মতো গর্ভধারণ করলে গর্ভকালীন ও প্রসবসংক্রান্ত জটিলতা দেখা দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে[৭] তাই এসব ক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর সুস্থতা বিবেচনা করে নরমাল ডেলিভারির পরিবর্তে সিজার করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারেউল্লেখ্য অনেক কম বয়সে (যেমন ১৯ বছর পূর্ণ হওয়ার আগে) গর্ভধারণ করলেও গর্ভকালীন ও প্রসবসংক্রান্ত জটিলতায় ভোগার সম্ভাবনা বেড়ে যায়অকাল প্রসবের সম্ভাবনাও তুলনামূলকভাবে বেশি থাকে ফলে সিজারের প্রয়োজন হতে পারেনরমাল ডেলিভারির পর পুরোপুরি সুস্থ হতে কত সময় লাগেনরমাল ডেলিভারির পর পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার সময়টা একেকজনের জন্য একেকরকম হতে পারে তবে সাধারণত প্রসবের পর শরীর আগের অবস্থায় ফেরত আসতে কমবেশি ৬ সপ্তাহ সময় লাগেনরমাল ডেলিভারি হওয়ার কতদিন পর সহবাস করা যায়সাধারণত নরমাল ডেলিভারির ৬ সপ্তাহ অর্থাৎ দেড় মাস পর থেকে স্বাভাবিকভাবে সহবাস করা যায় তবে পুরোপুরি সুস্থ হওয়ার এই সময়টা সবার ক্ষেত্রে সমান হয় না শারীরিক অবস্থা অনুযায়ী কারও কম আবার কারও অপেক্ষাকৃত বেশি সময় লাগতে পারে হাসপাতালে ডেলিভারি হলে আপনার ছুটির কাগজে সময়টা লিখে দেওয়া থাকবে এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিননরমাল ডেলিভারি হওয়ার কতদিন পর বাচ্চা নেওয়া যায় গর্ভাবস্থায় পেটের আকার স্বাভাবিকভাবেই অনেকখানি বেড়ে যায় গর্ভের শিশুকে জায়গা দেওয়ার জন্য পেটের চামড়াও অনেক প্রসারিত হয় ফলে ডেলিভারির পরও মায়ের পেটের আকার বড় থেকে যায় সময়ের সাথে এটি স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসেগর্ভাবস্থায় পেটের আকার স্বাভাবিকভাবেই অনেকখানি বেড়ে যায় গর্ভের শিশুকে জায়গা দেওয়ার জন্য পেটের চামড়াও অনেক প্রসারিত হয় ফলে ডেলিভারির পরও মায়ের পেটের আকার বড় থেকে যায় সময়ের সাথে এটি স্বাভাবিক অবস্থায় চলে আসেশরীরকে দ্রুত গর্ভধারণের আগের অবস্থায় ফিরিয়ে নিতে নিয়মিত ব্যায়াম করা এবং প্রয়োজন অনুযায়ী খাবার খাওয়া খুব গুরুত্বপূর্ণ সাথে শিশুকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ালে সেটাও ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারেঅনেকের জন্য জন্মদানের পর পেট কমানো একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া হতে পারে সময়ের সাথে পেট ও পুরো শরীর স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসে এই সময়ে নিজের শারীরিক দুর্বলতার কথা মাথায় রেখে ধৈর্য সহকারে নিজের যত্ন নিতে হবে ডেলিভারির পর পেট কমানোর প্রস্তুতি হিসেবে গর্ভাবস্থা থেকেই নিয়মিত শরীরচর্চা করা উচিত গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় শরীরচর্চা করলে নারীরা সন্তান প্রসবের পরে দ্রুত সুস্থ হয়ে ওঠেন এতে ওজন কমিয়ে গর্ভধারণের আগের ওজনে ফিরে যাওয়া সহজ হয় শুধু তাই নয় এটি প্রসবপরবর্তী বিষণ্ণতা বা পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন প্রতিরোধে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখতে পারেপড়ুন গর্ভাবস্থায় যেসব ব্যায়াম করা নিরাপদপ্রসবের পর নতুন শিশুর যত্ন সেই সাথে প্রসবের ধকল—এমন অবস্থায় হয়তো আপনার ক্লান্ত লাগবে ব্যায়াম করতে ইচ্ছা করবে না কিন্তু এসময়ে ব্যায়াম করলে তা আপনার শরীরকে আগের অবস্থায় ফিরে যেতে সাহায্য করবে শরীরকে দ্রুত ফিট করে তুলতে শক্তি বাড়াতে এবং মানসিক প্রশান্তি দিতে সাহায্য করবেডেলিভারির সময়ে বিশেষ জটিলতা না হয়ে থাকলে আপনি যখন ইচ্ছে হবে তখন থেকেই হালকা ব্যায়াম করতে পারবেন হঠাৎ করেই অনেক বেশি কসরত করার প্রয়োজন নেই হাঁটাহাঁটি পেটের পেশি শক্তিশালী করে তোলার ব্যায়াম ও পেলভিক ফ্লোর এক্সারসাইজের মতো হালকা ব্যায়াম দিয়ে শুরু করতে পারেন ধীরে ধীরে ব্যায়ামের পরিমাণ ও তীব্রতা বাড়ানসাধারণত ডেলিভারির পর প্রথম ৬ সপ্তাহ দৌড়ঝাঁপ বা ভারী কোনো ব্যায়াম না করাই ভালো শরীর সচল রাখা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু শরীরের ওপর অতিরিক্ত ধকল নিয়ে নিজেকে ক্লান্ত করে ফেলবেন না শরীরের অবস্থা অনুযায়ী ঠিক কোন ধরনের ব্যায়াম আপনার জন্য উপযোগী হবে—তা জানতে প্রসবপরবর্তী চেকআপের সময়ে ডাক্তারের পরামর্শ নিন প্রসবের পর স্বাস্থ্যকর ওজন ধরে রেখে পেট কমানোর সম্ভাবনা বাড়াতে পর্যাপ্ত পানি ও তরল খাবার খাওয়ার পাশাপাশি সঠিক পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া চালিয়ে যাওয়া প্রয়োজনপ্রতিদিন অন্তত ৪০০ গ্রাম টাটকা অথবা ফ্রোজেন ফল ও শাকসবজি খাবেন সেই সাথে সপ্তাহে অন্তত দুই দিন মাছ খাবেন সাদা চাল ও সাধারণ আটাময়দার পরিবর্তে লাল চাল ও লাল আটা বেছে নেওয়ার চেষ্টা করবেনওজন অতিরিক্ত হলে এসময়ে সঠিক পরিমাণে খাবার খাওয়ার পাশাপাশি নিয়মিত মাঝারি তীব্রতার ব্যায়াম করা গুরুত্বপূর্ণ প্রতিদিন অন্তত আধা ঘন্টা করে দ্রুত হাঁটা অথবা সাঁতার কাটার মতো ব্যায়াম বেছে নিতে পারেনওজন কমানোর জন্য ব্যক্তিগত গাইডলাইন পেতে ডাক্তার ও রেজিস্টার্ড নিউট্রিশনিস্ট এর পরামর্শ নিন নিজে নিজে কোনো বিশেষ ডায়েট শুরু না করাই ভালো এতে বুকের দুধের সরবরাহ কমে যেতে পারে সেই সাথে শরীরে কোনো নির্দিষ্ট পুষ্টি উপাদানের অভাব দেখা দিতে পারে গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে শিশুকে একটানা অন্তত ৩ মাস নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ালে তা তুলনামূলকভাবে বেশি ওজন কমাতে সাহায্য করতে পারে অন্য এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভধারণের আগে ওজন অতিরিক্ত ছিল—এমন মায়েদের ওজন কমাতে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ানো বিশেষভাবে সাহায্য করে ডেলিভারির পর শিশুকে নিয়মিত বুকের দুধ খাওয়ালে তা শিশুর পাশাপাশি আপনার স্বাস্থ্যের জন্যও সহায়ক হতে পারেযদি আপনি শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ান এবং উচ্চতা অনুযায়ী আপনার ওজন স্বাভাবিক সীমায় থাকে তাহলে গর্ভাবস্থায় আলাদা করে কোনো ডায়েট অনুসরণ করার প্রয়োজন নেই এই সময়টায় মায়ের সঠিক পরিমাণে পুষ্টিকর খাবার খাওয়া জরুরি সেই সাথে বিশেষভাবে প্রচুর পরিমাণে পানি পান করতে হবে অতিরিক্ত তেলচর্বি ও চিনি যুক্ত খাবার এড়িয়ে চলতে হবে সিজার বা সিজারিয়ান সেকশন একটি বড় অপারেশন কখন শিশুর ডেলিভারির জন্য সিজার করাতে হয় কেমন খরচ হয় সেরে উঠতে কতদিন লাগে কবে থেকে সহবাস করা যায় পরবর্তী গর্ভধারণে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব কী না—এমন অনেকগুলো কমন জিজ্ঞাসার উত্তর নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছেসিজার বা সিজারিয়ান সেকশন একটি বড় অপারেশন কখন শিশুর ডেলিভারির জন্য সিজার করাতে হয় কেমন খরচ হয় সেরে উঠতে কতদিন লাগে কবে থেকে সহবাস করা যায় পরবর্তী গর্ভধারণে নরমাল ডেলিভারি সম্ভব কী না—এমন অনেকগুলো কমন জিজ্ঞাসার উত্তর নিয়ে এই আর্টিকেলে আলোচনা করা হয়েছে গর্ভধারণের পর সর্বনিম্ন কত সপ্তাহে সিজার করা যায় গর্ভের বাচ্চার ওজন কত হলে সিজার করা যায় সিজার করতে কত টাকা খরচ হয় সিজারে কসমেটিক সেলাই ভালো না কি নরমাল সেলাই গর্ভবতী মা হার্টের রোগী হলে কি সিজার করা জরুরি সিজারের পর কী কী সমস্যা হতে পারে সিজারের পর ব্যথা হলে করণীয় কী সিজারের পর ইনফেকশন হলে করণীয় কী সিজারের পর কাশি হলে করণীয় কী সিজারের পর ব্যথা কতদিন থাকে সিজারের পর কতদিন পর্যন্ত ব্লিডিং হয় সিজারের পর করণীয় কী কী সিজারের সেলাই কতদিন পর কাটতে হয় সিজারের কাটা কতদিন পর শুকায় সিজারের পর পেটের দাগ কমানোর উপায় কী সিজারের পর কতদিন পর্যন্ত বেল্ট ব্যবহার করতে হয় সিজার হওয়ার পর কী কী খাওয়া যাবে না সিজারের পর কি কি ফল খাওয়া যাবে সিজারের কতদিন পর গরুর দুধ খাওয়া যায় সিজারের পর কি আনারস খাওয়া যাবে সিজারের কতদিন পর মিষ্টি খাওয়া যায় সিজারের কতদিন পর সহবাস করা যায় সিজারে বাচ্চা হওয়ার কত দিন পর মাসিক হয় সিজারের কতদিন পর আবার বাচ্চা নেওয়া যায় প্রথম সিজারের পর নরমাল ডেলিভারি হওয়া কি সম্ভব পরিবারে নতুন অতিথির আগমন নিঃসন্দেহে আনন্দের ও উত্তেজনার এই সুন্দর সময়টি নিশ্চিন্তে কাটানোর জন্য দরকার পূর্বপ্রস্তুতি এই পূর্বপ্রস্তুতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ডেলিভারির আগের প্রস্তুতিপরিবারে নতুন অতিথির আগমন নিঃসন্দেহে আনন্দের ও উত্তেজনার এই সুন্দর সময়টি নিশ্চিন্তে কাটানোর জন্য দরকার পূর্বপ্রস্তুতি এই পূর্বপ্রস্তুতির একটা গুরুত্বপূর্ণ অংশ হলো ডেলিভারির আগের প্রস্তুতিআপনার সন্তান জন্মদানের সম্ভাব্য তারিখের অন্তত তিন সপ্তাহ আগে থেকেই এই পরিকল্পনা শুরু করে দিন হাসপাতালে থাকার জন্য নিজের ও নবজাতকের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আগেই ব্যাগে গুছিয়ে রাখুন এক্ষেত্রে নিচের তালিকা অনুসরণ করে একটা ব্যক্তিগত চেকলিস্ট তৈরি করে নিতে পারেন আপনার গর্ভকালীন সকল চেকআপের কাগজপত্র অবশ্যই সাথে নিয়ে যাবেন যেমন প্রেসক্রিপশন আল্ট্রাসনোগ্রাম রিপোর্ট ব্লাড গ্রুপ ও অন্যান্য পরীক্ষানিরীক্ষার রিপোর্ট আপনি এর আগে গর্ভধারণ করে থাকলে বিশেষ করে গর্ভকালীন ও প্রসবকালীন কোনো জটিলতা হয়ে থাকলে সে সংক্রান্ত প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে যাবেন এক্ষেত্রে অবশ্যই আগেরবারের কাগজ এবং বর্তমান গর্ভকালীন কাগজপত্র আলাদা করে গুছিয়ে নিন সম্ভব হলে দুইটি আলাদা ফাইল ব্যবহার করুন গোছানোর সময়ে সর্বশেষ তারিখ থেকে সর্বপ্রথম তারিখ অনুযায়ী সিরিয়াল করতে পারেন আপনার যদি অন্য কোনো রোগ (যেমন ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ থাইরয়েডের সমস্যা থ্যালাসেমিয়া কিংবা দীর্ঘমেয়াদী কোনো রোগ) থাকে এবং এর জন্য আপনি কোনো ওষুধ খান তাহলে ৭–৮ দিনের হিসেবমতো সেই ওষুধ নিয়ে যান এসব রোগের জন্য যদি চিকিৎসকের পক্ষ থেকে কোনো সতর্কবার্তা বা সাবধানতার পরামর্শ সংক্রান্ত লিফলেট থাকে তবে সেই কাগজটি সাথে নিয়ে যান ডায়াবেটিসের জন্য সুগার মাপার যন্ত্র বা গ্লুকোমিটার ব্যবহার করলে সেটা মনে করে নিয়ে যাবেন প্রসবকালে পরার জন্য ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক একটি জামা নিন যেটা পরে আপনার নড়াচড়া অথবা চলাফেরা করতে কোনো সমস্যা হবে না খুব গরম কিংবা ঠাণ্ডা লাগবে না এসময়ে বড় গলার হাফ হাতা জামা বা ম্যাক্সি ড্রেস পরতে পারেন এতে সঠিকভাবে প্রেশার মাপতে প্রয়োজনে ইনজেকশন দিতে ও রক্তের স্যাম্পল নিতে সুবিধা হবে নিচে পরার জন্য পেটিকোট বেছে নিতে পারেন এতে প্রস্রাব পরীক্ষা করার কিংবা প্রস্রাবের নল পরানোর সময়ে সুবিধা হতে পারে হাসপাতালে থাকাকালে পরার জন্য তিন থেকে চার সেট আরামদায়ক জামাকাপড় গুছিয়ে নিন এক্ষেত্রে সামনে হুক অথবা বোতাম দেওয়া জামা নিতে পারেন এতে পরবর্তীতে আপনার বাচ্চাকে বুকের দুধ খাওয়াতে সুবিধা হবে শীতকালে ডেলিভারি হলে শীতের কাপড় সাথে নিয়ে যান সম্ভব হলে একটা পানি গরম রাখার ফ্লাস্ক নিতে পারেন দুই জোড়া স্যান্ডেল নেওয়া উচিত একটি হাসপাতালে পরার জন্য আরেকটি গোসলখানা অথবা টয়লেটে যাওয়ার জন্য দুই থেকে তিনটি অন্তর্বাস সেট নিন যেহেতু সন্তান জন্মের পর বুকের দুধ খাওয়ানোর প্রয়োজন পড়বে কাজেই সম্ভব হলে নার্সিং ব্রা সাথে নিন নার্সিং ব্রা শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর উপযোগী করে তৈরি করা হয় এসময়ে যেহেতু স্তন স্বাভাবিকের তুলনায় আকারে কিছুটা বড় হয়ে যায় কাজেই সেই মাপ অনুযায়ী অন্তর্বাস নির্বাচন করুন দুই থেকে তিন প্যাকেট ভালো শোষণ ক্ষমতাযুক্ত ম্যাটার্নিটি প্যাড বা স্যানিটারি ন্যাপকিন কিনে রাখুন সাধারণত প্রসবের সময় থেকেই এটা প্রয়োজন হয় ব্রেস্ট প্যাড সাথে নিয়ে যেতে পারেন এটি মূলত এক ধরণের কাপড় বা প্যাড যা মায়ের স্তন থেকে নিঃসৃত হওয়া অতিরিক্ত দুধটুকু শোষণ করে স্তন শুষ্ক রাখে এটি ইনফেকশন প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে একটি ছোটো ব্যাগে দাঁত মাজার ব্রাশপেস্ট টিস্যু পেপার চিরুনি সাবান ছোটো শ্যাম্পুর প্যাকেট লিকুইড হ্যান্ডওয়াশ গামছা বা তোয়ালে ছোটো এক বোতল লোশন—এই ধরনের নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসগুলো আলাদা করে রাখুন সাথে কিছু স্বাস্থ্যকর নাস্তা (যেমন আপেল সেদ্ধ ডিম গাজর ও পর্যাপ্ত পানি) নিয়ে যাবেন খাবারের প্লেট চামচ ও গ্লাস নিয়ে যান সাথে একটা ডিশ ওয়াশিং লিকুইড নিন সম্ভব হলে ঝামেলা এড়াতে ওয়ানটাইমইউজ কয়েক সেট নিতে পারেন যেহেতু আমাদের গ্রীষ্মপ্রধান অঞ্চল এবং প্রসবকালে আপনার গরম অনুভূত হতে পারে তাই সাথে ছোটো আকারের চার্জ দেওয়া অথবা ব্যাটারি চালিত ফ্যান কিনে রাখতে পারেন আবার বিদ্যুৎ চলে গেলে যাতে সমস্যা না হয় তাই সাথে একটি মোমবাতিদেশলাই অথবা টর্চলাইট রাখা উচিত আপনি মোবাইল ফোন ব্যবহার করলে তার চার্জার নিতে ভুলবেন না সম্ভব হলে একটা মাল্টিসকেট অ্যাডাপটার ও পাওয়ার ব্যাংক নিতে পারেন সময় কাটানোর জন্য চাইলে ভালো একটা বই কিংবা ম্যাগাজিনও রাখতে পারেন আপনার সাথে কারও হাসপাতালে থাকার সুযোগ থাকলে তাদের জন্য প্রয়োজনীয় জিনিসগুলো নেওয়ার কথা মনে করিয়ে দিন বহন করতে কষ্ট না হলে তাদের জন্য ভাঁজ করা যায় এমন ছোটো টুল বা পিঁড়ি বিছানার চাদর ও ছোটো একটা কুশন নিতে পারেন হাসপাতালে বিভিন্ন কারণে অতিরিক্ত টাকাপয়সা লাগতে পারে আগে থেকে টাকা জমিয়ে ডেলিভারির সময়ে সেই টাকা সঙ্গে নিয়ে যান ও সাবধানে রাখুন মোবাইল ফোন ও অন্যান্য ব্যক্তিগত মূল্যবান সামগ্রীও যথাসম্ভব সতর্কভাবে ব্যবহার করুন নবজাতককে মোড়ানোর জন্য ভালো সুতি কাপড়ের ছোটো কাঁথা কিংবা তোয়ালে নবজাতকের পরার উপযোগী আরামদায়ক সুতি কাপড়ের জামা সঠিক মাপের ডায়পার অথবা প্রস্রাবপায়খানার জন্য উপযুক্ত কাপড়ের টুকরা শীতকালে প্রয়োজন অনুযায়ী উপযুক্ত কাঁথা ও অন্যান্য গরম কাপড় বাচ্চার ঘুমানোর জন্য ছোটো বালিশ মশারি ও চাদর বাচ্চার প্রস্রাবের জন্য যাতে বিছানা না ভিজে এমন ক্লথ (অয়েল ক্লথ) অথবা মোটা পলিথিন বাচ্চা যাতে বিছানা থেকে পড়ে না যায়–এজন্য অতিরিক্ত দুইটি বালিশ অথবা কোলবালিশ আপনার নরমাল ডেলিভারি করানোর পরিকল্পনা থাকলেও মাথায় রাখতে হবে যে গর্ভাবস্থায় যেকোনো সময়ে জটিলতা দেখা দিতে পারে এবং চিকিৎসক আপনাকে অবিলম্বে সিজারিয়ান সেকশন (যাকে আমরা প্রচলিত ভাষায় সিজার অপারেশন বলে থাকি) করানোর পরামর্শ দিতে পারেন কাজেই সেই অনুযায়ী মানসিক ও আর্থিক প্রস্তুতি নিয়ে যান সরকারী হাসপাতালে সাধারণত এই অপারেশনগুলো বিনামূল্যে অথবা নামমাত্র মূল্যে হয়ে থাকে তারপরেও কিছুটা আর্থিক প্রস্তুতি রাখা ভালো যাতে জরুরি ভিত্তিতে কোনোকিছু দরকার হলে অপেক্ষা না করে নিজেই ব্যবস্থা করে নিতে পারেন তবে বেসরকারি হাসপাতালে যেতে হলে অবশ্যই সেই অনুযায়ী আগে থেকে টাকার পরিমাণ জেনে প্রস্তুতি নিয়ে যাবেন বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে স্থানভেদে টাকার পরিমাণ তারতম্য হয়ে থাকেআপনার চিকিৎসক আপনাকে নরমাল অথবা সিজার যেই পদ্ধতির কথাই বলুন না কেন নিজের রক্তের গ্রুপ জেনে রাখবেন প্রথম গর্ভকালীন চেকআপের পরই অন্তত দুইতিনজন রক্তদাতা জোগাড় করে রাখবেন কেননা অপারেশনের জন্য যেমন আপনার রক্ত লাগতে পারে তেমনি নরমাল পদ্ধতিতে প্রসব করলেও যোনিপথ থেকে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হয়ে রক্ত লাগতে পারে ডেলিভারির জন্য হাসপাতালে যাওয়ার আগে সম্ভাব্য রক্তদাতাদের জানিয়ে যাবেন এবং প্রয়োজনে প্রস্তুত থাকতে অনূর্ধ্ব করবেন আপনি হাসপাতাল পর্যন্ত কিভাবে যাবেন কার সাথে যাবেন—এই ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলুন আপনার সাথে হাসপাতাল পর্যন্ত যাওয়ার জন্য অন্তত দুই তিনজনকে বলে রাখুন যাতে হঠাৎ প্রয়োজন হলে এবং কেউ একজন ব্যস্ত থাকলে অন্যজন আপনাকে সহযোগিতা করতে পারে আপনি চাইলে আপনার ব্যক্তিগত কাজে সাহায্য করার জন্য পরিবারের একজন নারী সদস্যকে বলে রাখতে পারেন একই সাথে উনিও যেন উনার নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আলাদা একটি ব্যাগে গুছিয়ে নিয়ে আসেন সেটি জানিয়ে রাখুন যাতায়াতের জন্য এমন একটি যানবাহন পছন্দ করুন যেটা নিরাপদ ও রাস্তায় ঝাঁকুনি কম লাগবে সম্ভব হলে যানবাহন চালকের সাথে আগে থেকেই কথা বলে রাখুন অ্যাম্বুলেন্সের নাম্বার জোগাড় করে রাখুন যাতে হঠাৎ করে রোগীর অবস্থা খারাপ হয়ে গেলে তাড়াতাড়ি হাসপাতালে পৌঁছানো যায় নরমাল ডেলিভারিতে সাধারণত এক থেকে দুই দিন এবং সিজারিয়ান সেকশনের পর তিন থেকে চার দিন হাসপাতালে থাকতে হয় ক্ষেত্রবিশেষে আরও বেশিদিন হাসপাতালে থাকার প্রয়োজন হতে পারে এই সময়টুকুতে আপনার সংসার এবং অন্য সন্তানদের দেখাশোনার জন্য একজন সাহায্যকর্মী বা পরিচিতজনকে ঠিক করে রাখতে পারেনআগেভাগেই আপনার সঙ্গী ও পরিবারের অন্য সদস্যদের এসব প্রস্তুতির দায়িত্ব দিয়ে রাখুন প্রসবের সময়ে আপনি শারীরিক ও মানসিকভাবে একটা গুরুত্বপূর্ণ সময়ের মধ্য দিয়ে যাবেন এসময়ের বাড়তি দায়িত্বগুলো পরিবারের সদস্যরা ভাগাভাগি করে নিলে পুরো যাত্রাটা হয়তো কিছুটা সহজ হয়ে আসবে গর্ভবতীর রক্তে সুগারের মাত্রা জানতে যে পরীক্ষাটি করা হয় সেটির নাম ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট বা ওজিটিটি এটি এক ধরনের রক্ত পরীক্ষা এই পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভবতীর ডায়াবেটিসের অবস্থা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যায়গর্ভবতীর রক্তে সুগারের মাত্রা জানতে যে পরীক্ষাটি করা হয় সেটির নাম ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট বা ওজিটিটি এটি এক ধরনের রক্ত পরীক্ষা এই পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভবতীর ডায়াবেটিসের অবস্থা সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্য জানা যায়ডায়াবেটিসের অবস্থা জানা থাকলে গর্ভবতীকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা যায় এবং সেই অনুযায়ী সঠিক চিকিৎসা করা যায় তাই ওজিটিটি ডায়াবেটিস সংক্রান্ত গর্ভকালীন ও প্রসবপরবর্তী বিভিন্ন জটিলতা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারে ডায়াবেটিস হলে রক্তে সুগার তথা গ্লুকোজের মাত্রা স্বাভাবিকের তুলনায় বেড়ে যায় এই বাড়তি সুগার মা ও গর্ভের শিশুর শরীরে বিভিন্ন ধরনের নেতিবাচক প্রভাব ফেলে তার মধ্যে রয়েছে—গর্ভকালীন উচ্চ রক্তচাপ চিকিৎসা না করালে এটি বিভিন্ন মারাত্মক জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে যেমন প্রিএক্লাম্পসিয়া ও এক্লাম্পসিয়া গর্ভের শিশু আকারে স্বাভাবিকের চেয়ে বড় হওয়া এর ফলে প্রসবের সময় বিভিন্ন জটিলতা দেখা দিতে পারে কৃত্রিমভাবে প্রসব প্রক্রিয়া শুরু করার অথবা সিজার করার প্রয়োজন হতে পারে[১] অকাল প্রসব বা গর্ভাবস্থার ৩৭তম সপ্তাহ পূর্ণ হওয়ার আগেই সন্তান প্রসব হয়ে যাওয়া শিশু গর্ভে যেই অ্যামনিওটিক তরল দিয়ে ঘেরা থাকে তার পরিমাণ বেড়ে যাওয়া একে ডাক্তারি ভাষায় পলিহাইড্রামনিওস বলে এটি অকাল প্রসব ও প্রসবসংক্রান্ত নানান জটিলতার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে মৃতপ্রসব জন্মের পর শিশুর ত্বক ও চোখের সাদা অংশ হলদেটে হয়ে যাওয়া ডাক্তারি ভাষায় একে জন্ডিস বলে[২] এর ফলে শিশুকে হাসপাতালে ভর্তি করে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন হতে পারে জন্মের পর পর হার্টের সমস্যা ও শ্বাসপ্রশ্বাসের জটিলতাসহ বিভিন্ন কারণে নিওনেটাল আইসিইউতে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজন বেড়ে যাওয়া[৩] শিশুর পরবর্তী জীবনে অতিরিক্ত ওজন স্থূলতা ও ডায়াবেটিসের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া[৪]ওজিটিটির মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা মেপে দেখা হয় এভাবে আপনি গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে ভুগছেন কি না সেটা নির্ণয় করা যায় আগে থেকে ডায়াবেটিসে ভুগলে গর্ভাবস্থায় সুগারের নিয়ন্ত্রণ কেমন—সেই সম্পর্কিত তথ্যও উঠে আসেডায়াবেটিস সংক্রান্ত তথ্য জানা থাকলে ডাক্তার আপনাকে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার খাবার তালিকা ব্যায়াম ও ঔষধ নিয়ে গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিতে পারবেন সেই সাথে আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যকে বিশেষ পর্যবেক্ষণে রাখা যাবে প্রয়োজন অনুযায়ী বিশেষ পরীক্ষানিরীক্ষা করানো এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা পরামর্শ দেওয়া যাবে এগুলো ডায়াবেটিস সংক্রান্ত গর্ভকালীন ও প্রসবপরবর্তী বিভিন্ন জটিলতা প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারবেঅন্যদিকে রক্তে সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক থাকলে আপনি সেটা জেনে নিশ্চিন্ত হতে পারবেন সেই সাথে স্বাভাবিক মাত্রা কীভাবে ধরে রাখবেন সেই বিষয়ে ডাক্তার গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ দিতে পারবেন বাংলাদেশে সাধারণত অন্তত দুইবার ওজিটিটি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয় প্রথম গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে অন্যান্য রক্ত পরীক্ষার সাথেই প্রথম ওজিটিটি পরীক্ষা করে ফেলা হয় এরপর গর্ভাবস্থার ২৪তম–২৮তম সপ্তাহের ভেতরে আরেকবার ওজিটিটি পরীক্ষা করাতে হয় এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় কিছু বিশেষ ক্ষেত্রে ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকে সেসব ক্ষেত্রে ২৪তম–২৮তম সপ্তাহের আগেই ওজিটিটি করানোর পরামর্শ দেওয়া হতে পারে যেমন—যদি আগের কোনো গর্ভাবস্থায় আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়ে থাকে যদি আপনার পরিবারে ডায়াবেটিসের ইতিহাস থাকে যেমন মা বাবা ভাই অথবা বোনের ডায়াবেটিস থাকে[৫] যদি স্বাস্থ্যের সামগ্রিক অবস্থার ভিত্তিতে আপনি ডায়াবেটিসের বাড়তি ঝুঁকিতে থাকেন যদি আপনি অতিরিক্ত ওজন বা স্থুলতায় ভুগেনবিশেষ দ্রষ্টব্য গর্ভধারণের পরে যত দ্রুত সম্ভব গর্ভকালীন চেকআপ শুরু করা প্রয়োজন নিয়মিত চেকআপের মাধ্যমে মা ও গর্ভের শিশুর মৃত্যুহার অনেকাংশেই কমে আসে[৬]চেকআপের সময়ে ডাক্তার আপনার ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের অবস্থার ভিত্তিতে আপনার জন্য ব্যক্তিগত একটি পরিকল্পনা তৈরি করে দিতে পারেন এই পরিকল্পনার অংশ হিসেবে নির্দিষ্ট সময়ে ওজিটিটিসহ গর্ভকালীন গুরুত্বপূর্ণ নানান পরীক্ষানিরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হবেসেই সাথে গর্ভাবস্থায় আপনার চলাফেরা ও খাওয়াদাওয়া কেমন হবে সেই বিষয়েও দিকনির্দেশনা দেওয়া থাকবে তাই আপনার ও গর্ভের শিশুর সঠিক পরিচর্যার জন্য এসব তথ্য যত দ্রুত জানা যায় ততই ভালো ওজিটিটি পরীক্ষার আগে কিছু প্রস্তুতি নিতে হয় এর মধ্যে রয়েছে খাওয়াদাওয়া ব্যায়াম ধূমপান ও জীবনধারা বিষয়ক কিছু বিধিনিষেধ যেমন—পরীক্ষার আগের ৩ দিন স্বাভাবিক পরিমাণে কার্বোহাইড্রেট খাওয়াওজিটিটি পরীক্ষার আগের ৩ দিন খাবারে কোনো বাড়তি বিধিনিষেধ রাখবেন না এই ৩ দিন সাধারণত আপনি নিয়মিত যে ধরনের খাবার খেয়ে থাকেন সেভাবেই চালিয়ে যাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হবে বিশেষ করে কার্বোহাইড্রেট বা শর্করাজাতীয় খাবার—যা ভেঙে শরীরে গ্লুকোজ বা সুগার তৈরি হয়—তার পরিমাণ অপরিবর্তিত রাখার পরামর্শ দেওয়া হয় যেমন ভাত রুটি পাউরুটি মুড়ি ও আলুআপনাকে ডাক্তার কোনো বিশেষ ডায়েট অনুসরণ করার পরামর্শ দিয়ে থাকলে পরীক্ষার আগে এই বিষয়ে আলোচনা করে নিন সেক্ষেত্রে আপনাকে পরীক্ষার আগের ৩ দিন কমপক্ষে ১৫০ গ্রাম করে শর্করাজাতীয় খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে[৭] এসব নিয়ম যথাসম্ভব সঠিক ফলাফল পেতে সাহায্য করবেপরীক্ষার আগে কমপক্ষে ৮ ঘন্টা খালি পেটে থাকা[৮]ওজিটিটি পরীক্ষায় একবার খালি পেটে আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা এবং তারপর নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্লুকোজ মেশানো পানি খাওয়ার পরে আবারও রক্তে সুগারের মাত্রা মাপা হয়তাই ওজিটিটি করার আগের ৮–১০ ঘন্টার ভেতর কোনো ধরনের খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকবেন তবে সাধারণত পানি পান করতে কোনো বাধা নেই গর্ভবতীদের সুবিধার্থে তাই রাতে খাবার খেয়ে পরদিন সকালে ওজিটিটির জন্য রক্তের স্যাম্পল দিতে বলা হয়ঔষধের বিষয়ে সতর্কতাকিছু ঔষধ ওজিটিটির ফলাফলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে যেমন স্টেরয়েড জাতীয় ঔষধ ও বিটা ব্লকার জাতীয় হার্ট/প্রেসারের ঔষধ তাই পরীক্ষার ৩ দিন আগে সেসব ঔষধ সেবনের ব্যাপারে বিশেষ নির্দেশনা দেওয়া হতে পারে আপনি নিয়মিত কোনো ঔষধ খেলে তার ব্যাপারে আপনার ডাক্তারের সাথে আগেভাগেই আলোচনা করে নিনজীবনধারা বিষয়ক বিধিনিষেধপরীক্ষার আগের দিন থেকে শুরু করে পরীক্ষা শেষ হওয়ার আগ পর্যন্ত আপনার স্বাভাবিক রুটিনের বাইরে ব্যায়াম না করার পরামর্শ দেওয়া হয় যারা ধূমপান অথবা মদপান করেন তাদের এই সময়ে বিশেষভাবে এসব থেকে বিরত থাকার নির্দেশনা দেওয়া হয়এ ছাড়া চাকফিও এই পরীক্ষার ফলাফলের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে তাই পরীক্ষার আগে আগে এসব এড়িয়ে চলাই শ্রেয় ওজিটিটি পরীক্ষার পুরো প্রক্রিয়ায় প্রায় ২–২৫ ঘন্টার মত সময় লাগে এক্ষেত্রে মোট ২–৫ বার রক্ত নেওয়া হতে পারেপ্রথমে সকালবেলা আপনি খালি পেটে থাকা অবস্থায় রক্তের স্যাম্পল নেওয়া হবে এরপর আপনাকে নির্দিষ্ট পরিমাণ গ্লুকোজ মেশানো পানি পান করতে দেওয়া হবে তার ২ ঘন্টা পরে আপনার শরীরে এই গ্লুকোজের জন্য কী ধরনের প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি হয়েছে তা আবার রক্ত পরীক্ষা করে দেখা হবেকিছু হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ক্ষেত্রে ওপরের পদ্ধতির পাশাপাশি গ্লুকোজযুক্ত পানি পান করার যথাক্রমে ৩০ মিনিট ১ ঘন্টা ও ১৫ ঘন্টা পরে আরও ৩টি স্যাম্পল নিয়ে তাতে সুগারের মাত্রা দেখা হয়এই পরীক্ষার ধাপগুলো হচ্ছে—সারারাত খালি পেটে থাকার পর সকাল সকাল পরীক্ষার জন্য আপনাকে হাসপাতাল বা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে যেতে হবে প্রথমে আপনার হাতের শিরা থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হবে একবার রক্ত সংগ্রহ করার পর আপনাকে গ্লুকোজ মেশানো পানি পান করতে দেওয়া হবে এক্ষেত্রে ২০০ মিলি পানিতে ৭৫ গ্রাম গ্লুকোজ ভালোমতো মিশিয়ে নিতে হবে এরপর আস্তে আস্তে প্রায় ৫ মিনিট ধরে এই গ্লুকোজ মেশানো পানি খেতে হবে খুব দ্রুত খেয়ে ফেললে পেটে অস্বস্তি হতে পারে গ্লুকোজ মেশানো পানি খাওয়ার পর আরও ১০০ মিলি সাধারণ পানি খেতে হবে হিসাবের সুবিধার্থে বাসা থেকে দুইটা আলাদা বোতলে ২০০ মিলি ও ১০০ মিলি পানি ভরে নিয়ে যেতে পারেন এসব পান করার ২ ঘন্টা পর আবার রক্ত সংগ্রহ করা হবে মাঝের ২ ঘন্টাতে আর কিছু খাবেন না উল্লেখ্য অনেকসময় এই সময়ের মধ্যে আরও ৩ বার রক্তের স্যাম্পল নেওয়া হতে পারে এগুলো সাধারণত গ্লুকোজ মেশানো পানি খাওয়ার যথাক্রমে ৩০ মিনিট ১ ঘন্টা ও ১৫ ঘন্টা পরে নেওয়া হয় অবশেষে ২ ঘন্টা পর স্যাম্পল নেওয়ার মাধ্যমে পরীক্ষাটি শেষ হবে যেহেতু অনেকটা সময় না খেয়ে থাকতে হবে তাই পরীক্ষা করতে যাওয়ার সময় সাথে করে খাবার নিয়ে যেতে পারেন ২ ঘন্টা পর শেষবারের মতো স্যাম্পল দেওয়া হয়ে গেলে তা খেয়ে নিবেন ওজিটিটি খুবই নিরাপদ একটি পরীক্ষা সাধারণত এই পরীক্ষার পর কারোরই তেমন কোনো সমস্যা হয় না তবে সামান্য কিছু ক্ষেত্রে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন—সুঁই ফুটানোর স্থানে ব্যথা মাথা ঘুরানো অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ সুঁই ফুটানোর স্থানে ইনফেকশন এলার্জিকিছু বিরল ক্ষেত্রে সুঁই সিরিঞ্জ বা ল্যান্সেটের মাধ্যমে ভাইরাসের সংক্রমণ হতে পারে এটি প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে সবসময় স্টেরাইল বা জীবাণুমুক্ত সুঁইসিরিঞ্জের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে রক্ত সংগ্রহ করার পদ্ধতি যথাসম্ভব জীবাণুমুক্ত রাখা উচিত ওজিটিটি পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে সাধারণত ১–২ দিন সময় লাগে রিপোর্ট সংগ্রহ করতে কবে ও কোথায় যেতে হবে সেটা পরীক্ষা শেষেই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জেনে নিনআপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস আছে বলে ধরা হবে যদি রক্তে সুগার বা গ্লুকোজের মাত্রা—খালি পেটে ৫১ থেকে ৬৯ mmol/L অথবা ৯৫ mg/dL এর বেশি হয় গ্লুকোজ মেশানো পানি পর ৮৫ থেকে ১১০ mmol/L অথবা ১২০ mg/dL এর বেশি হয়যদি রক্তে সুগারের মাত্রা ওপরে উল্লিখিত মাত্রার চেয়েও বেশি হয় তাহলে গর্ভবতীর সাধারণ ডায়াবেটিস বা টাইপ ২ ডায়াবেটিস আছে ধরে স্বাস্থ্য পরামর্শ দেওয়া হয়ডায়াবেটিস ধরা পড়লে উভয় ক্ষেত্রেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে এসময়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াদাওয়া ব্যায়াম ও ডায়াবেটিসের ঔষধ সংক্রান্ত নির্দেশনা মেনে চলতে হবে পাশাপাশি নিয়মিত রক্তের সুগার পর্যবেক্ষণে রাখতে হবে এক্ষেত্রে নিয়মিত রক্তের সুগার মাপার মেশিন বা গ্লুকোমিটার দিয়ে রক্তের সুগার মাপার পরামর্শ দেওয়া হয় দিনে কতবার এবং কোন সময়ে মাপতে হবে সেটা ডাক্তার আপনাকে জানিয়ে দিবেনএ ছাড়া একটা লম্বা সময় ধরে রক্তে সুগারের নিয়ন্ত্রণ কেমন ছিল তা জানতে রক্তের সুগার মাপার আরেকটি বিশেষ পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে এটিও একটি রক্ত পরীক্ষা যার নাম এইচবিএ১সি (HbA1C)উল্লেখ্য সুগারের মাত্রা স্বাভাবিক হলে আপনার কোনো বাড়তি পদক্ষেপ নিতে হবে না তবে সুগার নিয়ন্ত্রণে রাখার উদ্দেশ্যে স্বাস্থ্যকর অভ্যাস চালিয়ে যেতে হবেপড়ুন ঘরে বসে ডায়াবেটিস পরীক্ষা ওজিটিটি পরীক্ষা করতে আপনার ২০০–৩০০ টাকা খরচ হতে পারে তবে হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারভেদে এই খরচে বেশকম হতে পারে সন্তান জন্মদানের সময় যত ঘনিয়ে আসে প্রসবের লক্ষণ নিয়ে মায়েদের চিন্তাদুশ্চিন্তা তত বাড়তে থাকে কখন পেটে টান অনুভব করলে সেটা প্রসববেদনা যোনি দিয়ে নিঃসৃত স্রাব প্রসব শুরু হওয়ার লক্ষণ কি না—এমন নানান রকমের প্রশ্ন মাথায় ঘুরতে থাকে তাই প্রসবের লক্ষণগুলো সম্পর্কে মায়েদের স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার যাতে প্রসবের সময়টা সুন্দরভাবে সামলানো সম্ভব হয়সন্তান জন্মদানের সময় যত ঘনিয়ে আসে প্রসবের লক্ষণ নিয়ে মায়েদের চিন্তাদুশ্চিন্তা তত বাড়তে থাকে কখন পেটে টান অনুভব করলে সেটা প্রসববেদনা যোনি দিয়ে নিঃসৃত স্রাব প্রসব শুরু হওয়ার লক্ষণ কি না—এমন নানান রকমের প্রশ্ন মাথায় ঘুরতে থাকে তাই প্রসবের লক্ষণগুলো সম্পর্কে মায়েদের স্পষ্ট ধারণা থাকা দরকার যাতে প্রসবের সময়টা সুন্দরভাবে সামলানো সম্ভব হয় গর্ভের সন্তানকে জরায়ু থেকে যোনিপথ দিয়ে বের করে বাইরের জগতে নিয়ে আসার প্রক্রিয়াটি হলো প্রসব প্রসবকাল তিনটি ধাপে বিভক্ত প্রতিটি ধাপেই আপনার মধ্যে বেশ কিছু শারীরিক লক্ষণ দেখা যাবে—প্রথম ধাপে আপনার জরায়ুমুখ পাতলা হতে শুরু করে এবং ধীরে ধীরে এটি প্রসারিত হতে থাকে যখন আপনার জরায়ুমুখ বাচ্চা প্রসবের জন্য পুরোপুরি প্রসারিত হয়ে যায় তখন এই ধাপটি শেষ হয় দ্বিতীয় ধাপে আপনার সন্তান জরায়ু থেকে জরায়ুমুখ দিয়ে যোনিপথে নেমে আসে এবং পর্যায়ক্রমে ভূমিষ্ঠ হয় বাচ্চাকে বের হয়ে আসতে সহযোগিতা করতে এই পর্যায় পেটে চাপ তৈরি করে মায়ের কিছুটা ধাক্কা দেওয়ার প্রয়োজন হয় তৃতীয় ধাপে আপনার জরায়ু থেকে গর্ভফুল আলাদা হয়ে বের হয়ে আসে এই গর্ভফুলের মাধ্যমে গর্ভাবস্থায় আপনার সন্তান আপনার থেকে অক্সিজেন ও পুষ্টি পেয়ে এসেছে আবার সন্তানের বর্জ্য পদার্থগুলোও বের হয়েছে এই গর্ভফুলের মাধ্যমেই প্রসব নিকটবর্তী হলে বিশেষ কিছু লক্ষণ মায়েরা খেয়াল করে থাকেন তবে এই লক্ষণগুলো সবসময় প্রসবের লক্ষণ না হয়ে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে স্বাভাবিকভাবেই দেখা দিতে পারে এসব লক্ষণগুলো হলো—১ গর্ভের সন্তান কিছুটা নিচে নামা এটি আপনার প্রথম গর্ভাবস্থা হয়ে থাকলে প্রসবের কয়েক সপ্তাহ আগে আপনার মনে হতে পারে যে আপনার সন্তান গর্ভের কিছুটা নিচের দিকে অবস্থান করছেসন্তান তলপেটের দিকে নেমে যাওয়ার কারণে আপনার শ্বাস নেওয়া আগের চেয়ে সহজ হয়ে যেতে পারে যদি গর্ভাবস্থায় আপনার বুকে অ্যাসিডিটির কারণে জ্বালাপোড়া থেকে থাকে সেটিও এসময় দূর হয়ে যেতে পারে তবে এসময় আপনার মূত্রাশয়ের ওপর বাড়তি চাপ পড়ার কারণে ঘন ঘন প্রস্রাবের বেগ পাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারেতবে দ্বিতীয় বা তার পরবর্তী গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রে সন্তান নিচে নামার অনুভূতি সাধারণত প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার পরে হয়ে থাকে২ স্রাবের দলা নিঃসৃত হওয়া যখন আপনার জরায়ুমুখ বড়ো হওয়া শুরু করে তখন যোনি দিয়ে একদলা স্রাব বের হতে পারে এটি গর্ভাবস্থায় আপনার জরায়ুমুখে জমা হওয়া থাকে সাধারণত এর অর্থ হলো আপনি প্রসব প্রক্রিয়ায় প্রবেশ করছেন তবে এটি প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার কিছুটা সময় আগেও হতে পারেঅনেকসময় স্রাব একটি দলায় একবারে বের না হয়ে অল্প অল্প করে কয়েক দিন বা কয়েক সপ্তাহ জুড়ে বের হতে থাকতে পারে তবে যদি এর সাথে প্রসবের অন্যান্য লক্ষণগুলো না থেকে থাকে তাহলে আপনার চিকিৎসককে এই পর্যায়ে জানানোর দরকার পড়বে না৩ শো বা রক্ত মিশ্রিত স্রাব দেখা যাওয়া গর্ভাবস্থার শেষের দিকে যখন আপনার জরায়ুমুখ নরম ও পাতলা হতে শুরু করে তখন আপনার যোনি দিয়ে রক্ত মাখা স্রাব বের হতে পারে একে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় শো আগে বর্ণিত স্রাবের দলা বের হয়ে যাওয়ার পর এটি হতে পারে আবার আলাদাভাবে শুধুমাত্র রক্ত মিশ্রিত স্রাবও নিঃসৃত হতে পারেএমন স্রাব লক্ষ করার বেশ কিছু দিন পরে প্রসব শুরু হতে পারে তবে রক্তক্ষরণ যদি স্বাভাবিক মাসিকের রক্তপাতের চেয়ে ভারী হয় যদি রক্ত মাখা নিঃসরণের সাথে আপনার পেটে ব্যথা থাকে অথবা যদি রক্তক্ষরণ অনেক দিন ধরে হয়ে থাকে এবং না কমে তাহলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৪ জরায়ুমুখ পাতলা ও প্রসারিত হয়ে যাওয়া প্রসব প্রক্রিয়ার একদম শুরুর দিকে আপনার জরায়ুমুখ পাতলা ও খাটো হয়ে প্রসারিত হতে শুরু হতে পারে তবে এর আরও কিছু সময় পর সক্রিয় প্রসব শুরু হতে পারেযদি আপনি গর্ভকালে অ্যান্টিন্যাটাল সেবা নিয়ে থাকেন তাহলে আপনার চিকিৎসক আপনার জরায়ুমুখ পাতলা নরম বা প্রসারিত হতে শুরু করেছে কি না তা বলতে পারবেন ৫ পেটে অনিয়মিত মৃদু টান অনুভব করা গর্ভকালে আপনি পেটে বা তলপেটে টান অনুভব করে থাকতে পারেন যেগুলো অনিয়মিত ভাবে আসে যায় এবং কখনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থায়ী হয় না একে ব্রেক্সটন হিক্স কন্ট্রাকশন বলা হয়গর্ভাবস্থার শেষের দিকে এই টানগুলো আরও ঘন ঘন হতে পারে প্রকৃত প্রসববেদনা শুরু হওয়ার আগে এমন হতে পারে গর্ভাবস্থার ৩৮ থেকে ৪২ সপ্তাহের মাঝে সাধারণত প্রসব শুরু হয়ে থাকে প্রাথমিক লক্ষণগুলো বুঝতে সমস্যা হয়ে থাকলেও প্রসবের কিছু নির্ভরযোগ্য লক্ষণ হলো—১ পেটে তীব্র টান ও ব্যথা অনুভব করা সক্রিয় প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গেলে আপনি পেটে তীব্র টান ও ব্যথা অনুভব করবেন—যা নির্দিষ্ট সময় পর পর হতে থাকবে ব্যথা নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থায়ী হবে এবং তারপর কমে যাবে কত সময় পর পর ব্যথা হচ্ছে এবং কত সময় ধরে ব্যথা হচ্ছে সেটি লক্ষ করুনপ্রকৃত প্রসববেদনা তীব্র হবে আপনি টানের মাঝে কথা বলতে পারবেন না এবং ব্যথায় আপনার চোখে পানিও চলে আসতে পারে২ কোমর ব্যথা যদি পেটে টান অনুভব করার সাথে আপনার কোমর ব্যথা হতে থাকে এটি প্রসবের একটি বিশেষ লক্ষণ পেটে এক টান থেকে পরবর্তী টানের মাঝেও কোমর ব্যথা থাকবে এর অর্থ হলো আপনার সন্তান তখন নিচের দিকে নামতে শুরু করেছে এবং আপনার কোমরে চাপ তৈরি করছে তবে অনেকের মতে জরায়ুর সংকোচনের ফলে কোমরে এই ব্যথা তৈরি হয়৩ পানি ভাঙা জরায়ুর ভেতরে আপনার সন্তান আ্যমনিওটিক স্যাক নামের একটি থলের মধ্যে বেড়ে ওঠে সেখানে অ্যামনিওটিক ফ্লুইড নামের এক ধরনের তরলের মধ্যে সে ভাসমান থাকে প্রসব শুরুর সময়ে এই থলিটি ছিঁড়ে বা ভেঙে গিয়ে আপনার যোনি দিয়ে এই পানি বের হয়ে আসে একে আমরা সাধারণ ভাষায় পানি ভাঙা বলিযদি আপনার পানি ভেঙে যায় তবে প্রসববেদনা শুরু না হয়ে থাকে তবে একে বলা হয় প্রিম্যাচুর রাপচার অফ মেমব্রেন পানি ভাঙার ৬ থেকে ২৪ ঘন্টার মধ্যে যদি আপনার প্রসব প্রক্রিয়া শুরু না হয়ে থাকে তবে চিকিৎসক আপনাকে ঔষধ ব্যবহার করে প্রসব শুরু করার উপদেশ দিতে পারেনএর কারণ হলো অ্যামনিওটিক ফ্লুইড আপনার সন্তানকে বিভিন্ন জীবাণু থেকে সুরক্ষা দেয় পানি ভাঙার পর তরল ছাড়া গর্ভের ভেতর সন্তান বেশি সময় থাকলে তার ইনফেকশন হওয়ার আশঙ্কা থাকে সেজন্য চিকিৎসক আপনাকে ঔষধের সাহায্যে দ্রুত প্রসব প্রক্রিয়া শুরু করার পরামর্শ দিতে পারেনঅন্যদিকে যদি আপনার পানি ৩৭ সপ্তাহের আগে ভাঙে এটি আপনার অকাল প্রসব অর্থাৎ সময়ের আগেই সন্তান প্রসব হওয়ার একটি লক্ষণ হতে পারে তাই ৩৭ সপ্তাহের আগে আপনার পানি ভাঙলে সাথে সাথে হাসপাতালে যান সাধারণত ৩৭ থেকে ৪২ সপ্তাহের মধ্যে গর্ভবতী মায়েরা প্রসব করে থাকেন ৩৭ সপ্তাহের আগে যদি আপনার জরায়ুর নিয়মিত সংকোচন শুরু হয়ে আপনার জরায়ুমুখ প্রসারিত হয়ে যায় তাকে প্রিটার্ম লেবার বা অকাল প্রসব বলা হয়এই সংকোচন বা টানগুলো ব্রেক্সটন হিক্স কন্ট্রাকশন না কি প্রকৃত প্রসববেদনা তা নিয়ে কিছুটা সংশয় তৈরি হতে পারে বুঝার উপায় হলো যদি টানগুলো অনিয়মিত ভাবে আসে যায় এবং কখনো নির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থায়ী না হয় তবে সেগুলো প্রকৃত প্রসববেদনা নাপ্রসববেদনার টান নিয়মিত সময় পর পর অনুভব করতে পারবেন এবং টান নির্দিষ্ট সময় জুড়ে থাকবে সময়ের সাথে সাথে সন্তান প্রসবের আগ পর্যন্ত প্রসববেদনার তীব্রতা ও সময়কাল বাড়তে থাকবেতবে যদি ৩৭ সপ্তাহের আগে আপনার নিচের লক্ষণগুলো দেখা দেয় তবে আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন—স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি স্রাব বের হওয়া সাধারণের চেয়ে আলাদা স্রাব (যেমন পানি পানি আঠালো কিংবা রক্তমিশ্রিত স্রাব) বের হওয়া যোনি দিয়ে রক্ত বের হওয়া বা অন্তর্বাসে ছোপ ছোপ রক্ত দেখতে পাওয়া পেটে ব্যথা মাসিকের ব্যথার মতো মোচড় অনুভব করা এক ঘন্টার ভেতর ব্যথাসহ বা ব্যথাহীন সংকোচন বা টান ৬ অথবা তার বেশিবার অনুভব হওয়া তলপেটে বেশি চাপ অনুভব করা কোমরে ব্যথা হওয়া পানি ভাঙাযদি আপনি প্রিটার্ম লেবারে থেকে থাকেন তাহলে আপনার গর্ভের সন্তানের ফুসফুসের বিকাশের জন্য কিছু ঔষধ দেওয়া হতে পারে আপনার প্রসব প্রক্রিয়া আরও লম্বা করার জন্যও আপনাকে চিকিৎসক কিছু ঔষধ দিতে পারেন আপনার সন্তানের সুস্থতার জন্য এই ঔষধগুলো খুবই গুরুত্বপূর্ণ ঝুঁকিবিহীন গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রে যখন আপনি ৩ থেকে ৫ মিনিট সময়ে একটি করে টান অনুভব করবেন এবং টানগুলো কষ্টদায়ক মনে হবে (প্রতিটি টান এক মিনিটের মত স্থায়ী হবে) তখন আপনাকে সন্তান প্রসবের জন্য হাসপাতালে যেতে হবে অথবা আপনার প্রসব পরিচালনা করার জন্য নির্ধারিত দক্ষ দাইকে খবর দিতে হবেতবে কখন আপনি হাসপাতালে যাবেন তা আপনার নিজস্ব অবস্থার উপর নির্ভর করবে কিছু বিশেষ অবস্থায় হাসপাতালে যাওয়ার প্রয়োজনীয়তা বেশি হতে পারে যেমন—হাইরিস্ক বা ঝুঁকিপূর্ণ গর্ভাবস্থা হলে প্রথম সন্তান হলে সিজার অপারেশনের প্রয়োজনীয়তা থাকলে সিজারের পর স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে সাধারণত প্রায় ১৫ মাস সময় লাগতে পারে তবে এই সময়টা সবার জন্য এক হয় না সুস্থতা নিশ্চিত করে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে প্রসূতি মায়েদের চেকআপে থাকা গুরুত্বপূর্ণসিজারের পর স্বাভাবিক জীবনযাপনে ফিরতে সাধারণত প্রায় ১৫ মাস সময় লাগতে পারে তবে এই সময়টা সবার জন্য এক হয় না সুস্থতা নিশ্চিত করে দ্রুত স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে প্রসূতি মায়েদের চেকআপে থাকা গুরুত্বপূর্ণ স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে যাওয়ার আগে আপনার শরীরে কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে যেমন—হালকা পেট কামড়ানো বিশেষ করে শিশুকে বুকের দুধ খাওয়ানোর সময়ে এমন হয় যোনিপথ দিয়ে রক্ত অথবা স্রাব যাওয়া প্রায় ১–১৫ মাস এমন রক্ত অথবা স্রাব যেতে পারে এ ছাড়া কিছুটা চাকা চাকা রক্ত যেতে পারে সাথে পেট কামড়াতে পারে অপারেশনের জায়গায় ব্যথা হওয়া অথবা অবশ লাগা কখনো কখনো একই সাথে ব্যথা হতে ও অবশ লাগতে পারেএসব নিয়ে দুশ্চিন্তার কিছু নেই তবে তীব্র পেট ব্যথা ভারী রক্তপাত কিংবা লক্ষণ নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন সিজার একটি বড় অপারেশন এই অপারেশনের পর সেরে ওঠা ও নিজের স্বাস্থ্য ফিরে পাওয়া একটা চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারে নবজাতকের যত্ন নেওয়ার পাশাপাশি নিজের যত্ন নেওয়াটাকে অনেক মাই অবহেলা করেন ফলে শারীরিক ফিটনেস ফিরে পেতে বেশি সময়ের প্রয়োজন হয়সিজারের পর কাটা স্থান শুকানো থেকে শুরু করে আগের মতো সবল হয়ে ওঠার প্রক্রিয়াকে দ্রুততর করার জন্য কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শ নিয়ে এখানে আলোচনা করা হয়েছে—অপারেশনে কাটা স্থানের যত্নকীভাবে অপারেশনে কাটা স্থানটির যত্ন নিতে হবে তা হাসপাতাল থেকে ছুটি নেওয়ার সময় আপনাকে বলে দেওয়া হবে এসময়ে যেসব উপদেশ দেওয়া হতে পারে—অপারেশনের জায়গাটি সাবান ও পানি দিয়ে প্রতিদিন একবার আলতো করে পরিষ্কার করুন বেশি জোরে জোরে ঘষামাজা করবেন না পরিষ্কার করা শেষে জায়গাটা শুকনো তোয়ালে বা গামছা দিয়ে ভালোমতো শুকিয়ে নিন ঢিলেঢালা ও আরামদায়ক কাপড় পরুন সিনথেটিক কাপড়ের পরিবর্তে সুতি কাপড়ের অন্তর্বাস বেছে নিন শরীরের সাথে মিশে যায় না—এমন সুতা দিয়ে পেট সেলাই করলে তা সাধারণত অপারেশনের ৫–৭ দিন পর খুলে ফেলা হয় আপনাকে এমন পরামর্শ দেওয়া হলে সময়মতো স্বাস্থ্যকেন্দ্রে গিয়ে সেলাই কাটিয়ে আসবেনসিজারের পর ইনফেকশনের লক্ষণ অপারেশনের জায়গায় ইনফেকশনের লক্ষণ দেখা দেয় কি না সেই বিষয়ে সতর্ক থাকুন ইনফেকশনের লক্ষণের মধ্যে রয়েছে অপারেশনের জায়গাটি— অনেক লাল হয়ে যাওয়া ফুলে যাওয়া ব্যথা হওয়া সেখান থেকে পুঁজ বা দুর্গন্ধযুক্ত তরল বের হওয়া এসবের পাশাপাশি জ্বর আসা এমন কোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন সঠিক চিকিৎসার অভাবে ইনফেকশন রক্তে ছড়িয়ে গিয়ে মারাত্মক রূপ নিতে পারেসিজারের কাটা দ্রুত শুকানোর জন্য কিছু টিপসকাটা স্থানটি শুকনা রাখুন কাটা জায়গাটি শুকনা রাখার ফলে সেখানে জীবাণু দিয়ে ইনফেকশন অথবা প্রদাহ হওয়ার আশংকা কমে যায় এর ফলে কাটা স্থানটি দ্রুত শুকিয়ে যেতে পারেপর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নিন অন্য যেকোনো বড় অপারেশনের মতো সিজার অপারেশনের পর পুরোপুরি সেরে ওঠার জন্য বিশ্রাম একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় আপনার কাটা স্থানটি দ্রুত শুকানোর জন্য সামগ্রিক ভাবে আপনার সেরে ওঠাটা জরুরিনবজাতকের দেখাশোনা করার ফাঁকে বিশ্রাম নেওয়াটা কঠিন হতে পারে তাই যখনই সুযোগ পাবেন তখনই একটু বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করবেন এসময়ে পরিবারের বাকি সদস্যদের সহযোগিতা নিন নবজাতকের দেখভালের পাশাপাশি নিজের সুস্বাস্থ্যে ফিরে আসাকে গুরুত্ব দিনশরীর সচল রাখুন শরীর সক্রিয় থাকলে শরীরের রক্ত প্রবাহ ভালো হয় কাটা স্থানে রক্ত প্রবাহ বৃদ্ধি পেলে তা তাড়াতাড়ি শুকাবে তাই নিজেকে কিছুটা সক্রিয় রাখার চেষ্টা করুনঘরেই টুকটাক কাজকর্ম করতে পারেন হালকা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকুন প্রতিদিন একটুখানি হেঁটে আসুন এতে করে রক্ত জমাট বেঁধে প্রাণঘাতী জটিলতা হওয়ার আশংকা কমবে তবে কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন শরীর সচল রাখা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু শরীরের ওপর অতিরিক্ত ধকল নিয়ে নিজেকে ক্লান্ত করে ফেলবেন না প্রয়োজনে বাড়ির অন্য সদস্যদের সাহায্য নিনসিজারের পর পরই হালকা হাঁটাচলা সাঁতার ও পেশিকে মজবুত করার বিভিন্ন ধরনের ব্যায়াম করা যেতে পারে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে আপনার জন্য সঠিক মাত্রার ও ধরনের ব্যায়ামগুলো জেনে নিনপুষ্টিকর খাবার খান শারীরিকভাবে সুস্থ থাকতে সুষম ও পুষ্টিকর খাবারের বিকল্প নেই সিজারের পর বেশি বেশি আঁশযুক্ত খাবার শাকসবজি ও ফলমূল খাওয়ার চেষ্টা করুন সেই সাথে পরিমাণমতো ডিমদুধ মাছ ও মুরগির মাংস খান খাবারের পাশাপাশি গর্ভাবস্থায় যে আয়রনফলিক এসিড ট্যাবলেট খাওয়া হতো তা ডেলিভারিপরবর্তী ৩ মাস সেবন চালিয়ে যান মাল্টিভিটামিন সেবন করতে চাইলে কোন কম্বিনেশন আপনার জন্য সবচেয়ে ভালো হবে সেটা ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিন কোষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে বেশি করে পানি পান করুন অপারেশনের পর নানান কারণে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য হলে পেটে চাপ পড়ার কারণে কাটা স্থান শুকাতে বেশি সময় লাগতে পারে কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধে বেশি বেশি পান পান করুন প্রচুর আঁশযুক্ত খাবার ফল ও শাকসবজি খানব্যথাঅপারেশনের জায়গায় কয়েকদিন বেশ ব্যথা থাকবে কারও কারও ক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহ পর্যন্ত ব্যথা থাকতে পারেএক্ষেত্রে ব্যথানাশক হিসেবে প্যারাসিটামল অথবা আইবুপ্রোফেন বেছে নিতে পারেন এগুলো ওভার দা কাউন্টার ঔষধ ওভার দা কাউন্টার ঔষধগুলো ফার্মেসি থেকে কিনে সাথে থাকা নির্দেশিকা অনুযায়ী সেবন করা নিরাপদ তবে আপনার আগে থেকে কোনো স্বাস্থ্য সমস্যা থাকলে কিংবা এই বিষয়ে কোনো প্রশ্ন থাকলে ডাক্তারের সাথে কথা বলে নিনশিশুকে বুকের দুধ খাওয়ালেও প্যারাসিটামল ও আইবুপ্রোফেন সেবন করা যায় তবে সাধারণত অ্যাসপিরিন ও কোডেইন জাতীয় ঔষধ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়যোনিপথে রক্তক্ষরণঅপারেশনের পর যোনিপথ দিয়ে কিছুটা রক্ত যেতে পারে এজন্য ম্যাটারনিটি প্যাড বা স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করতে পারেন ভারী রক্তপাত হলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এসময়ে ইনফেকশন এড়াতে কয়েক সপ্তাহ যোনিপথে ট্যাম্পনের মতো কিছু ব্যবহার করা এবং সহবাস করা থেকে বিরত থাকুন[১]স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যাওয়াসাধারণত বাড়ি ফেরার পর পরই আপনি আপনার সন্তানকে কোলে নিয়ে হাঁটতে চলতে পারবেন তবে কিছু কাজ করতে প্রায় দেড় মাসের মতো সময় লাগতে পারে যেমন—সহবাস করা নবজাতকের চেয়ে ওজনে ভারী কিছু বহন করা ভারী ব্যায়াম করা গাড়ি চালানোআপনি যখন এসব কাজ করতে নিজেকে শারীরিক ও মানসিকভাবে ফিট মনে করবেন কেবল তখনই ধীরে ধীরে স্বাভাবিক জীবনের সব কাজে ফিরে আসবেন এই বিষয়ে যেকোনো প্রশ্ন থাকলে প্রসূতি বা পোস্টনেটাল চেকআপের সময়ে ডাক্তারকে তা জানানতবে অপারেশনের পর সেরে ওঠার সময়টায় একেবারে শুয়েবসে থাকবেন না নিজেকে কিছুটা সক্রিয় রাখার চেষ্টা করুন হালকা কাজকর্মে ব্যস্ত থাকুন প্রতিদিন একটুখানি হেঁটে আসুন এতে করে রক্ত জমাট বেঁধে প্রাণঘাতী জটিলতা হওয়ার আশংকা কমবে তবে কমপক্ষে ৬ সপ্তাহ ভারী কাজ করা থেকে বিরত থাকবেন শরীর সচল রাখা গুরুত্বপূর্ণ কিন্তু শরীরের ওপর অতিরিক্ত ধকল নিয়ে নিজেকে ক্লান্ত করে ফেলবেন না প্রয়োজনে বাড়ির অন্য সদস্যদের সাহায্য নিনসিজার অপারেশনের দাগ অপারেশনের জায়গাটা ধীরে ধীরে সেরে গিয়ে তলপেটে একটা দাগ তৈরি করবে সাধারণত তলপেটের একেবারে নিচের অংশের মাঝ বরাবর ১০–২০ সেমি লম্বা একটি আড়াআড়ি দাগ পড়ে প্রথম প্রথম দাগটি লাল রঙের হয়ে থাকে এসময়ে দাগটি বেশ স্পষ্টভাবে বোঝা যেতে পারে সময়ের সাথে সাথে দাগটি ম্লান হয়ে যাবে অনেকসময় আপনার যৌনাঙ্গের আশেপাশের চুল দিয়ে দাগটি ঢাকা পড়ে যেতে পারে গায়ের রঙ গাঢ় হলে ত্বকে বাদামী অথবা সাদা দাগের মতো থেকে যেতে পারে সিজারের পর যে লক্ষণগুলো দেখা দেওয়ার সাথে সাথে ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে—জ্বর শরীর কাঁপুনি অপারেশনের জায়গায় ইনফেকশন যেমন জায়গাটা অনেক লাল হয়ে যাওয়া ফুলে যাওয়া ব্যথা হওয়া সেখান থেকে পুঁজ বা দুর্গন্ধযুক্ত তরল বের হওয়া যোনিপথে ভারী রক্তক্ষরণ তীব্র পেট ব্যথা পায়ে ব্যথা হওয়া অথবা ফুলে যাওয়া শ্বাসকষ্ট অথবা কাশি প্রস্রাব ছুটে যাওয়া প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালাপোড়া হওয়াসিজারের পর ওপরের যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়া জরুরি এগুলো ইনফেকশন অথবা রক্ত জমাট বাঁধার লক্ষণ হতে পারে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব এসব জটিলতার চিকিৎসা করা উচিত সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না করালে এসব জটিলতা থেকে মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে সিজারের পর আপনি সাধারণত স্বাভাবিক সব খাবারই খেতে পারবেন এসময়ে খাবার নিয়ে কোনো বিশেষ নিষেধাজ্ঞা নেই তবে দ্রুত সেরে ওঠার জন্য একটা সুষম ও পুষ্টিকর খাবার তালিকা মেনে চলার ব্যাপারে প্রাধান্য দেওয়া উচিতকিছু খাবার কাটা বা ক্ষত সারাতে বিশেষ ভূমিকা রাখে এর মধ্যে রয়েছে লেবু আমলকী ও পেয়ারার মতো ভিটামিন সি যুক্ত খাবার এবং ডিম মাছ ও ডালের মতো প্রোটিনযুক্ত খাবারঅন্যদিকে কোষ্ঠকাঠিন্য ও সর্দিকাশির প্রভাবে কাটা ঘা বা ক্ষত শুকাতে বেশি সময় লাগে এই সংক্রান্ত ঝামেলা এড়াতে নিয়মিত প্রচুর পানি এবং পর্যাপ্ত আঁশযুক্ত খাবার (যেমন শাকসবজি ফলমূল এবং লাল চালের ভাত) খেতে হবে যেসব খাবারে এলার্জি হয় সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবেকিছু খাবার হজম হতে বেশি সময় লাগে কিংবা খাওয়ার পরে পেট ফাঁপার আশংকা থাকে এতে পেটে অস্বস্তি হতে পারে সিজারের পর সাময়িকভাবে এগুলো এড়িয়ে চলা যায় এমন খাবারের মধ্যে রয়েছে—ভাজাপোড়া কার্বনেটেড ড্রিংক বা কোমল পানীয় চাকফি জাতীয় খাবার অ্যালকোহল যেসব খাবারে আপনার পেট ফাঁপার প্রবণতা রয়েছে অনেকের বাঁধাকপি ফুলকপি ব্রকলি ডাল পেঁয়াজ ও ঢেঁড়সের মতো খাবারে এমন প্রতিক্রিয়া হতে পারেমনে রাখতে হবে যে যেকোনো এক ধরনের খাবার তালিকা থেকে বাদ দিয়ে দিলে সেই ধরনের খাবার থেকে আসা পুষ্টির অভাব দেখা দিতে পারে এই বিষয়ে প্রয়োজনে একজন রেজিস্টার্ড ডায়েটিশিয়ানের পরামর্শ নিন সিজারের পরে কোমরে ম্যাটারনিটি বেল্ট পরলে তা আদৌ দ্রুত সেরে উঠতে কিংবা ব্যথা কমাতে সাহায্য করে কি না সেই বিষয়ে খুব বেশি গবেষণা নেই যেসব গবেষণা রয়েছে সেগুলোতে উঠে আসা প্রমাণও অনেকটা বিপরীতমুখীতাই সিজারের পর বেল্ট পরতেই হবে—এমন কোনো কথা নেই আপনি চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে ম্যাটারনিটি বেল্ট ব্যবহার করতে পারেন সেক্ষেত্রে নরম মোটা কাপড়ের বেল্ট ব্যবহার করা যেতে পারে যা আপনার পেট ও তলপেট ঘিরে রেখে সাপোর্ট দিবে স্বাভাবিকভাবে করা যায় এমন অধিকাংশ ব্যায়ামই গর্ভাবস্থায় চালিয়ে যাওয়া নিরাপদ আপনি আপনার পছন্দমতো প্রায় সব ধরনের ব্যায়ামই করতে পারবেন এখানে এমন কিছু ঘরোয়া ব্যায়াম তুলে ধরা হয়েছে যা আপনার পেশিগুলোকে শক্তিশালী করে গর্ভাবস্থার অতিরিক্ত ওজন বহনে সহায়তা করে সেই সাথে রক্ত চলাচল উন্নত করে জয়েন্টের শক্তি বাড়ায় ব্যথা কমায় ও সব মিলিয়ে সুস্থ বোধ করতে সাহায্য করেস্বাভাবিকভাবে করা যায় এমন অধিকাংশ ব্যায়ামই গর্ভাবস্থায় চালিয়ে যাওয়া নিরাপদ আপনি আপনার পছন্দমতো প্রায় সব ধরনের ব্যায়ামই করতে পারবেন এখানে এমন কিছু ঘরোয়া ব্যায়াম তুলে ধরা হয়েছে যা আপনার পেশিগুলোকে শক্তিশালী করে গর্ভাবস্থার অতিরিক্ত ওজন বহনে সহায়তা করে সেই সাথে রক্ত চলাচল উন্নত করে জয়েন্টের শক্তি বাড়ায় ব্যথা কমায় ও সব মিলিয়ে সুস্থ বোধ করতে সাহায্য করে গর্ভের শিশু আকারে বাড়ার সাথে সাথে আপনার পেটও সামনের দিকে বাড়তে থাকে সেই সাথে কোমরের জায়গাটুকু আরও বাঁকিয়ে যেতে পারে ফলে কোমর ব্যথা হতে পারে এই ব্যথা কমানোর জন্য এই ব্যায়ামটি করা যেতে পারে পেটের পেশি শক্তিশালী করার ব্যায়ামপ্রথমে ছবির মতো বক্স পজিশনএ যান অর্থাৎ চার হাতপা এমনভাবে মাটিতে রাখুন যেন— হাঁটু কোমর বরাবর থাকে হাতের তালু কাঁধ বরাবর থাকে আঙুলগুলো সামনের দিকে থাকে পেটের পেশি টানটান অবস্থায় থাকে পিঠ সোজা ও মেঝের সমান্তরালে থাকে এবার পেটের পেশিকে যথাসম্ভব টানটান করে পিঠের দিকে নিয়ে আসুন এরপর শরীরের উপরিভাগ খানিকটা বাঁকিয়ে পিঠ ওপরের দিকে তোলার চেষ্টা করুন আপনার ঘাড় ও মাথা রিল্যাক্স করুন এতে মাথা আলতোভাবে কিছুটা সামনের দিকে ঝুঁকে পড়তে পারে তবে খেয়াল রাখবেন যেন হাতের কনুই একদম সোজা হয়ে টানটান হয়ে না যায় পেটের পেশি টানটান রেখে এই অবস্থানটি কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন তারপর ধীরে ধীরে পিঠ নিচে নামিয়ে পূর্বের মতো বক্স অবস্থানে ফিরে আসুন এসময়ে খেয়াল রাখুন যেন পেটের ওজনে পিঠ বেশি বাঁকা না হয়ে যায় ব্যায়াম শেষে পিঠ সবসময় সোজা অবস্থানে আনতে হবে এভাবে ১০ বার আস্তে আস্তে পিঠ সাবধানে ওপরে তুলুন আর সোজা করুন প্রতিবারই পেটের পেশি টানটান করে রাখার চেষ্টা করুনউল্লেখ্য পিঠে ব্যথা থাকলে সাবধানে পিঠ ওঠানোর চেষ্টা করবেন যতদূর পর্যন্ত ওঠাতে কষ্ট না হয় ততটুকুই ওপরে তুলবেন দুই পায়ের মাঝখানে একটা পেশিবহুল পর্দার মতো অংশ থাকে একে পেলভিক ফ্লোর বলা হয় এটি জরায়ু মূত্রথলি ও নাড়িভুঁড়িকে সঠিক স্থানে ধরে রাখতে সাহায্য করে বিশেষ করে গর্ভাবস্থায় বাড়ন্ত জরায়ুকে সাপোর্ট দেয়প্রসবের সময়ও এই পেশিগুলো গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে কোনো কারণে পেলভিক ফ্লোরের পেশি দুর্বল হয়ে গেলে হাঁচি কাশি অথবা চাপ দিয়ে মলত্যাগ করার সময় কয়েক ফোঁটা প্রস্রাব বেরিয়ে আসার সমস্যাসহ নানান জটিলতা দেখা দিতে পারে গর্ভাবস্থায় অথবা প্রসবের পরে অনেকেরই এই সমস্যা দেখা দেয়৷ নিয়মিত পেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম করলে এই ধরনের সমস্যা এড়ানো সম্ভবপেলভিক ফ্লোরের ব্যায়াম অনেকের কাছে কেগেল ব্যায়াম নামেও পরিচিত এই ব্যায়ামটি দাঁড়িয়ে বসে অথবা শুয়ে যেকোনো ভাবেই করা যায়—প্রথমে পায়খানার রাস্তা চাপ দিয়ে এমনভাবে বন্ধ করে রাখুন যেন পায়খানা আটকানোর চেষ্টা করছেন একই সাথে যোনিপথকে চাপ দিয়ে ভিতরে ঢুকিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করুন প্রস্রাবের রাস্তাতেও এমনভাবে চাপ দিন যেন প্রস্রাব আটকানোর চেষ্টা করছেনমোট কথা প্রস্রাবপায়খানার বেগ আটকানোর জন্য যেভাবে আমরা দুই পায়ের মাঝখানের পেশিগুলোকে শক্ত করে রাখি সেভাবে পেশিগুলো শক্ত করুনপ্রথম কয়েকবার করার সময়ে ব্যায়ামটি দ্রুত করুন ওপরের পদ্ধতিতে দ্রুত চাপ প্রয়োগ করুন এবং ছেড়ে দিন এবার ব্যায়ামটা ধীরে ধীরে করার চেষ্টা করুন যতক্ষণ সম্ভব হয় পেশিগুলো চাপ দিয়ে ধরে রাখুন এভাবে চাপ ধরে রেখে মনে মনে ১ থেকে ১০ পর্যন্ত গুনবেন এরপর ধীরে ধীরে পেশিগুলো রিল্যাক্স করে চাপ ছেড়ে দিন এরকম ভাবে ৮–১০ বার চাপ দেওয়া এবং ছেড়ে দেওয়াকে এক সেট ব্যায়াম ধরা হয়হিসাবের সুবিধার জন্য প্রতিবেলার খাবারের পরে ব্যায়ামটি করতে পারেন সেই সাথে হাঁচি অথবা জোরে কাশি দেওয়ার সময়ও পেশিগুলো শক্ত করে রাখার প্র‍্যাকটিস করতে পারেন তবে প্রস্রাব অথবা পায়খানা করার সময় এই ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন ব্যায়াম করতে কোনো অসুবিধা হলে অথবা নির্দেশনা ঠিকমতো বুঝতে না পারলে ডাক্তারের পরামর্শ নিন প্রথমে আলতোভাবে দেয়াল ঘেঁষে দাঁড়ান এসময়ে যেন কাঁধ আর শরীরের নিচের অংশ বা নিতম্ব দেয়ালের সাথে লেগে থাকে সেদিকে খেয়াল রাখুন হাঁটু রিল্যাক্স করে রাখুন এবার আপনার পেটকে নিজে নিজে এমনভাবে ভেতরের দিকে ঢুকানোর চেষ্টা করুন যাতে পিঠ পেছনে দেয়ালের সাথে লেগে যায় এভাবে ৪ সেকেন্ড ধরে রেখে পেট আবার স্বাভাবিক অবস্থায় নিয়ে আসুন এভাবে মোট ১০ বার পর্যন্ত করুন এই ব্যায়ামটি পিঠ কোমর ও পেটের পেশিকে শক্তিশালী করতে সহায়তা করে এজন্য—প্রথমে মাটিতে বা শক্ত বিছানার ওপরে হাঁটু ভাঁজ করে বসুন ধীরে ধীরে শরীরের ওপরের অংশ ডানদিকে ঘুরানোর চেষ্টা করুন এরপর ডান হাত পেছনে নিয়ে তা দিয়ে বাম পায়ের গোড়ালি স্পর্শ করুন এসময়ে ভারসাম্য ধরে রাখার জন্য বামহাত ওপরের দিকে তুলে রাখতে পারেন কিছুক্ষণ এই অবস্থানে থাকার পর ধীরে ধীরে শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন এরপর একই নিয়মে বাম দিকে শরীর ঘুরিয়ে বাম হাত দিয়ে ডান পায়ের গোড়ালি স্পর্শ করার চেষ্টা করুন এভাবে উভয় পাশে ৪৬ বার ব্যায়াম করুন প্রতিবার ব্যায়াম করার সময়ে দিক পরিবর্তন করে নিন গর্ভাবস্থায় বিশেষ করে শেষ ত্রৈমাসিকে পেটের আকার সামনের দিকে অনেকটা বেড়ে যায় একারণে শরীরের ভারসাম্য ধরে রাখা কঠিন হয়ে পড়ে এই সমস্যা মোকাবেলায় নিচের ব্যায়ামটি সাহায্য করতে পারে—প্রথমে যতটা সম্ভব সোজা হয়ে দাঁড়ান এরপর দাঁড়ানো অবস্থায় দুই হাত পেছনে নিয়ে কোমরের ওপর রাখুন এবার দুই হাতের ওপর ভার দিয়ে ধীরে ধীরে শরীর পেছনের দিকে কিছুটা বাঁকানোর চেষ্টা করুন তবে ঘাড় পুরোপুরি বাঁকিয়ে ফেলার দরকার নেই এই অবস্থানটি ২০ সেকেন্ডের মতো ধরে রাখুন এভাবে মোট ৫৬ বার ব্যায়ামটি করুন ব্যায়ামটি করার সময়ে সাপোর্টের জন্য পাশে একটি চেয়ার রাখতে পারেন হাটু সোজা রেখে একটি চেয়ারে বসুন পিঠ টানটান রাখার দরকার নেই কিন্তু হেলান দেওয়াও যাবে না এসময়ে আপনার দুই পা কিছুটা ফাঁকা রেখে পায়ের পাতা মাটিতে রাখুন এবার শ্বাসপ্রশ্বাস স্বাভাবিক রেখে পেট ভেতরের দিকে ঢুকানোর চেষ্টা করুন পেট ছাড়া শরীরের বাকি অংশ রিল্যাক্সড রাখার চেষ্টা করুন বিশেষ করে দুই বাহু আর কোমরের একেবারে নিচের হাড়ের ওপর যেন চাপ না পড়ে সেদিকে খেয়াল রাখুন পেট চেপে রাখা অবস্থায় বাম পা আস্তে আস্তে ওপরে তোলার চেষ্টা করুন ওপরে তোলার সময় পা সোজা রাখতে হবে হাঁটু ভাঁজ করা যাবে না একই সময়ে ডান হাতও শপথ নেয়ার ভঙ্গিতে সামনের দিকে সোজা করে মেলে ধরুন এই অবস্থানটি কয়েক সেকেন্ড ধরে রাখুন কয়েক সেকেন্ড পরে হাতপা নামিয়ে আবার শুরুর অবস্থানে ফিরে আসুন এবার ডান পা ও বাম হাত দিয়ে ব্যায়ামটি আবার করুন এভাবে ডান ও বাম প্রতিপাশে ৪–৬ বার করে মোট ৮–১২ বার ব্যায়ামটি করুন প্রতিবার পাশ পরিবর্তন করে নিন অর্থাৎ প্রথমে ডানপাশে করলে এরপর বামপাশে এবং তারপর আবার ডানপাশে ব্যায়ামটি করুন ব্যায়াম ১ এই ব্যায়ামটি মূলত দুই হাত ও বুকের পেশিকে মজবুত করতে সহায়তা করে এই ব্যায়ামটি করার জন্য একটি রাবারের তৈরি লম্বা ব্যান্ড প্রয়োজন হবে যা সাধারণত ফার্মেসিতে রেজিস্ট্যান্স ব্যান্ড নামে পাওয়া যায়এই ব্যায়ামটি যেভাবে করবেন—প্রথমে পিঠ সোজা রেখে একটি চেয়ারে বসুন পা স্বাভাবিকভাবে মাটিতে রাখুন এবার রাবারের তৈরি ব্যান্ডটি হাতে নিন ব্যান্ডটি মাথার পেছনে নিয়ে যান বাম হাতের সাহায্যে ব্যান্ডটির এক প্রান্ত কোমর বরাবর শক্ত করে ধরে রাখুন৷ ডান হাত দিয়ে আরেক প্রান্ত ধরুন এবার প্রথমে ডান হাত দিয়ে ব্যান্ডটি টেনে লম্বা করে মাথার ওপরে নিয়ে যান এরপর কনুই ভাঁজ করে ব্যান্ডটিকে ছোটো করে আনুন অনেকটা স্প্রিং এর মতো ব্যান্ডটিকে এভাবে ছোটোবড়ো করতে থাকুন খেয়াল রাখবেন ব্যান্ডটি ছোটোবড়ো করার সময়ে কোমরের কাছে শক্ত করে ধরে রাখা প্রান্তটি যেন স্থির থাকে এভাবে ৪–৬ বার ডান হাত দিয়ে ব্যান্ডটিকে ছোটোবড়ো করুন তারপর হাত বদল করে একেবারে প্রথম অবস্থানে ফিরে যান এবার ডান হাত দিয়ে কোমরের প্রান্তটি ধরে রাখুন৷ আর বাম হাত দিয়ে ব্যায়ামটি করুন এভাবে ক্রমান্বয়ে দুই হাতের ব্যায়াম করে নিনব্যায়াম ২ এই ব্যায়ামটি আপনার শরীরের দুই পাশের আঁটসাঁট ভাব কমাতে ও শরীরকে রিল্যাক্স রাখতে সহায়তা করবেব্যা গর্ভের সন্তানকে জরায়ু থেকে যোনিপথ দিয়ে বাইরের জগতে বের করে আনার প্রক্রিয়াটি হলো প্রসব প্রসবের প্রক্রিয়াটি কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয় প্রতিটি ধাপেই প্রসূতি নারীদের শারীরিক কিছু পরিবর্তন হয় একই সাথে প্রসব মানসিকভাবেও মায়েদের জন্য একটি স্পর্শকাতর সময়গর্ভের সন্তানকে জরায়ু থেকে যোনিপথ দিয়ে বাইরের জগতে বের করে আনার প্রক্রিয়াটি হলো প্রসব প্রসবের প্রক্রিয়াটি কয়েক ধাপে সম্পন্ন হয় প্রতিটি ধাপেই প্রসূতি নারীদের শারীরিক কিছু পরিবর্তন হয় একই সাথে প্রসব মানসিকভাবেও মায়েদের জন্য একটি স্পর্শকাতর সময়সন্তান প্রসবের এ প্রক্রিয়াটি কেমন হয় তা নিয়ে নতুন মায়েদের নানান দুশ্চিন্তা থাকতে পারে লম্বা এই প্রক্রিয়ায় শরীরে কী কী পরিবর্তন হয় এবং কীভাবে নিজেকে এর মাঝে সামলে রাখতে হয় জানা থাকলে মায়েরা অনেকখানি আশ্বস্ত থাকতে পারেন প্রসবের সময় কাছে আসার কিছু প্রাথমিক লক্ষণ হচ্ছে—১ গর্ভের সন্তান কিছুটা নিচে নেমে আসা এটি আপনার প্রথম গর্ভাবস্থা হয়ে থাকলে প্রসবের কয়েক সপ্তাহ আগে আপনার মনে হতে পারে আপনার সন্তানটি গর্ভের ভেতরে কিছুটা নিচের দিকে অবস্থান করছে তবে দ্বিতীয় বা তার পরবর্তী গর্ভাবস্থার ক্ষেত্রে সন্তান নিচে নামার এই অনুভূতি প্রসব প্রক্রিয়া শুরু না হওয়া পর্যন্ত নাও হতে পারে২ স্রাবের দলা নিঃসৃত হওয়া যখন আপনার জরায়ুমুখ বড়ো হওয়া শুরু করে তখন যোনিপথে স্রাবের একটি বড়ো দলা বা একসাথে বেশি পরিমাণে স্রাব বের হয়ে আসতে পারে আবার একসাথে এক দলা বের না হয়ে লম্বা সময় ধরে ধীরে ধীরে অল্প পরিমাণে স্রাব বের হতে পারে অল্প অল্প করে বের হলে অনেকে স্রাব বের হওয়ার বিষয়টি লক্ষ্য নাও করতে পারে৩ জরায়ুমুখের পাতলা ও প্রসারিত হওয়া সন্তানের প্রসব সুগম করার জন্য প্রসবকালে নারীর শরীরে স্বাভাবিকভাবে কিছু পরিবর্তন হয় জরায়ুমুখের দেয়াল মোটা থেকে পাতলা হওয়া তার মধ্যে একটি সন্তান প্রসবের জন্য জরায়ুমুখের সরু রাস্তা প্রসারিত হয় যাকে সারভাইকাল ডাইলেশন বলে নিয়মিত গর্ভকালীন চেকআপএর সময় আপনার চিকিৎসক আপনার জরায়ুমুখ পাতলা নরম বা প্রসারিত হতে শুরু করেছে কি না তা বলতে পারবেন৪ স্রাবের সাথে সামান্য পরিমাণে রক্ত মিশ্রিত থাকা কখনো কখনো যোনিপথে স্রাবের সাথে অল্প পরিমাণে রক্তও বের হতে পারে কিন্তু রক্তক্ষরণ যদি স্বাভাবিক মাসিকের রক্তপাতের চেয়ে ভারী হয় যদি রক্ত মাখা নিঃসরণের সাথে আপনার পেটে ব্যথা থাকে অথবা যদি রক্তক্ষরণ অনেক দিন ধরে হয়ে থাকে এবং না কমে তাহলে জরুরি ভিত্তিতে ডাক্তারের পরামর্শ নিন৫ পেটে মৃদু টান অনুভব করা গর্ভাবস্থার শেষের দিকে আপনি পেটে বা তলপেটে মাঝেমাঝে হঠাৎ টান অনুভব করতে পারেন এই টান সাধারণত অনিয়মিত ভাবে দেখা দেয় এবং খুব বেশি সময়ের জন্য স্থায়ী হয় না একে ব্রেক্সটন হিক্স কন্ট্রাকশন বলা হয় এটি অনেকটা প্রসব ব্যথার মতো লাগে দেখে এটিকে নকল প্রসব বেদনা বা ফলস লেবার পেইনও বলা হয়তবে যদি এই টান নিয়মিতভাবে হতে থাকে এবং ধীরে ধীরে টানের স্থায়িত্ব বাড়তে থাকে তবে তা প্রকৃত প্রসব বেদনা শুরু হওয়ার লক্ষণ হতে পারে প্রসব জন্য নিজেকে শারীরিক ও মানসিক ভাবে প্রস্তুত করাটা জরুরি এর জন্য নিচের উপায়গুলো মেনে চলতে পারেন—প্রসব সম্পর্কে আগে থেকেই বিস্তারিত জেনে রাখুন প্রসব নিয়ে পরিষ্কার ধারণা আপনাকে এর জন্য মানসিক ভাবে প্রস্তুত হতে সহায়তা করবে আগে থেকেই একটি জন্ম পরিকল্পনা তৈরি করে রাখুন প্রসববেদনা উঠলে দ্রুত কীভাবে কোন হাসপাতালে যাবেন তা ঠিক করে রাখুন প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র আগে থেকে একটি ব্যাগে গুছিয়ে রাখতে পারেন প্রয়োজন অনুযায়ী অর্থ হাতে রাখুন প্রসব একটি শ্রমসাধ্য ব্যাপার তাই প্রসবের আগে পর্যাপ্ত পরিমাণে বিশ্রাম নেওয়ার চেষ্টা করুন তৃতীয় ত্রৈমাসিকে বিশেষ করে শেষের দিনগুলোতে ঘুম যেন কম না হয় সেদিকে খেয়াল রাখুন প্রসব নিয়ে নানারকম দুশ্চিন্তা আসাটা স্বাভাবিক তবে এ নিয়ে ভয় না পেয়ে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন আপনি মানসিকভাবে যতটা রিল্যাক্স থাকতে পারবেন আপনার জন্য প্রসবের সাথে মানিয়ে নেওয়া ততটা সহজ হবে নিজেকে শান্ত রাখার জন্য ধীরে ধীরে শ্বাস নেওয়া ও ছাড়ার প্র‍্যাকটিস করতে পারেন এ ধরনের শ্বাসপ্রশ্বাসের ব্যায়াম মাথা ঠান্ডা রাখতে/স্নায়বিক চাপ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সহায়তা করে সন্তান প্রসবের পুরো প্রক্রিয়াটিতে আপনার শরীরে প্রচুর পরিমাণে শক্তির প্রয়োজন হবে এজন্য পুষ্টিকর ও শক্তি দায়ক খাবার খাওয়ার কোনো বিকল্প নেই গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম বা শরীরচর্চা করলে তা আপনাকে শারীরিকভাবে প্রসবের জন্য প্রস্তুত হতে সহায়তা করবে তাই খুব বেশি সমস্যা না হলে প্রসবের আগের দিনগুলো পর্যন্ত নিয়মিত ব্যায়াম চালিয়ে যান প্রসববেদনা শুরু হওয়ার পর সাথে সাথে সন্তান প্রসব হয় না সাধারণত ব্যথা শুরু হওয়ার বেশ কয়েক ঘন্টা পর সন্তান প্রসব হয় এই মধ্যবর্তী সময়ে আপনি সম্ভব হলে হালকা হাঁটাচলা করতে পারেন এতে প্রসব সহজ হওয়ার সম্ভাবনা আছে তবে ডাক্তারের নিষেধ থাকলে এসময় বাড়তি চলাফেরা করার কোনো প্রয়োজন নেই প্রসববেদনা লাঘব করার জন্য অনেকে মালিশ বা ম্যাসাজ নিয়ে থাকেন অনেকে আবার হট ওয়াটার ব্যাগ অথবা আইস ব্যাগ ব্যবহার করে ব্যথা কমানোর চেষ্টা করেন ঔষধের সাহায্যেও প্রসববেদনা নিয়ন্ত্রণে রাখা যায় মাস্কের সাহায্যে দেওয়া নাইট্রাস অক্সাইড গ্যাস কিংবা ইনজেকশন এর মাধ্যমে দেওয়া পেথিডিন প্রসববেদনা কমায় এ ছাড়া ব্যথানাশক হিসেবেএপিড্যুরাল এনেস্থিসিয়াও অনেকের ক্ষেত্রে বেশ কার্যকরী হয় প্রসব প্রক্রিয়ায় মানসিক চাপমুক্ত থাকতে আপনজন কেউ সাথে থাকার বিকল্প নেই আপনার স্বামী কিংবা পরিবারের অন্য কোনো সদস্য সার্বক্ষণিক আপনার পাশে থেকে সাহস যোগালে তা আপনাকে মানসিকভাবে প্রসবের ধকল সহ্য করতে সহায়তা করবে তিনি প্রয়োজনে আপনার ব্যথার জায়গায় মালিশ করে আপনাকে সহায়তা করতে পারবেন সন্তান প্রসবের সময় হলে অক্সিটোসিন নামক হরমোনের প্রভাবে জরায়ুতে সংকোচন শুরু হয় এই সংকোচন মূলত গর্ভের সন্তানকে ঠেলে নিচে নামানোর জন্য হয় প্রসব প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে জরায়ুর সংকোচনের ফলে আপনার জরায়ুমুখ প্রসারিত হয় সেই সাথে আপনি সংকোচনের কারণে পেটে টান অনুভব করেন এ ধাপটি আবার দুইটি পর্যায়ে হয়ে থাকে—প্রাথমিক পর্যায় সক্রিয় পর্যায়সাধারণত যখন সক্রিয় পর্যায় শুরু হবে তখন আপনার চিকিৎসক অথবা ধাত্রী এর সহায়তা নিতে হবেপ্রসব প্রক্রিয়ার প্রথম ধাপে কী কী হয়১ পেটে টান অনুভব করাজরায়ুর সংকোচনের কারণে আপনার পেটে নিয়মিতভাবে টান অনুভব করতে থাকবেন প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি প্রতি ৪ থেকে ৫ মিনিটে ১টি করে টান অনুভব করতে পারেন একেকটি টান ৪০ থেকে ৬০ সেকেন্ড ধরে হতে পারে প্রাথমিক পর্যায়ে আপনি তলপেটে ব্যথা অনুভব করতে পারেন তবে সাধারণত এই ধাপে খুব গুরুতর ব্যথা হয় না আপনি টানের মাঝে হাঁটাচলা করতে পারবেন এমনকি ঘুমাতেও পারবেনসক্রিয় পর্যায় বা অ্যাক্টিভ লেবার শুরু হলে আপনার পেটের টানগুলো অনেক ঘন ঘন হতে থাকবে এবং একই সাথে অনেক লম্বা সময় ধরে হবে আপনি প্রতি আড়াই থেকে তিন মিনিটে একটি করে টান অনুভব করতে পারেন এক মিনিটের বেশি সময় ধরে টান স্থায়ী হতে শুরু করবে এই পর্যায়ে ব্যথাও আগের চেয়ে তীব্র হবে এবং আপনি ব্যথার ভেতর স্বাভাবিক কথোপকথন চালিয়ে যেতে পারবেন নাএই অবস্থায় যদি হাসপাতালে প্রসব করার পরিকল্পনা থেকে থাকে তাহলে হাসপাতালে যেতে হবে যদি আপনার গর্ভাবস্থা জটিলতামুক্ত হয়ে থাকে এবং আপনি ঘরে প্রসব করতে আগ্রহী হয়ে থাকেন তাহলে সক্রিয় ধাপেই দক্ষ ধাত্রীকে খবর দিতে হবেসুতরাং তলপেটে টান কত সময় পর পর এবং কতক্ষণ ধরে অনুভব করছেন—সেটি খেয়াল রাখা আপনার প্রসবের প্রস্তুতি নেওয়ার একটি গুরুত্বপূর্ণ অংশ তাই সঠিকভাবে এই সময়গুলো মাপার চেষ্টা করুন এবং সম্ভব হলে লিখে রাখুনপ্রসব প্রক্রিয়ার শুরুর দিকের এই সংকোচনকে অনেকে ব্রেক্সটন হিক্স নামক সংকোচনের সাথে গুলিয়ে ফেলতে পারেন গর্ভাবস্থায় বিশেষ করে শেষের দিকে জরায়ুতে অনিয়মিতভাবে যেই টান বা সংকোচন অনুভব হয় সেটিই হলো ব্রেক্সটন হিক্স গর্ভবতী মায়ের শরীরকে প্রসবের জন্য তৈরি করার উদ্দেশ্যে সত্যিকারের প্রসববেদনার আদলে এই ধরনের সংকোচন হয়ে থাকে ব্রেক্সটন হিক্স সংকোচনকে প্রকৃত প্রসববেদনা থেকে আলাদা করার উপায় হলো এটি— নির্দিষ্ট সময় পর পর হয় না অস্বস্তিকর হলেও ব্যথা তৈরি করে না নড়াচড়া করলে এটি কমে যেতে পারেখুব সহজভাবে বললে কারো সাথে কথোপকথনের মাঝে যদি আপনি টান অনুভব করেন এবং এরপরও স্বাভাবিকভাবে কথা চালিয়ে যেতে পারেন টানের কারণে কথা থামিয়ে দীর্ঘ শ্বাস নেওয়ার প্রয়োজন না হয়—তাহলে সেটি ব্রেক্সটন হিক্স আর এর অন্যথা হলে সেটি প্রকৃত প্রসববেদনাপড়ুন ব্রেক্সটন হিক্স ও প্রকৃত প্রসববেদনার মধ্যে পার্থক্য২ জরায়ুমুখ প্রসারিত হওয়াপ্রসবের প্রথম ধাপে আপনার জরায়ুমুখ বড়ো হতে থাকবে প্রাথমিক পর্যায়ে তা ৪ সেমি পর্যন্ত বড়ো হবে এবং এরপর সক্রিয় পর্যায় শুরু হয় এই পর্যায়ে আপনার জরায়ুমুখ আরও দ্রুত বড়ো হবে আপনার চিকিৎসক অথবা দক্ষ ধাত্রী প্রসারণের বিষয়টি পর্যবেক্ষণ করবেন এবং সেই সাথে যোনিপথের পরীক্ষাও করে নিবেন সাধারণত ৩ থেকে ৪ ঘন্টা পর পর তিনি পর্যবেক্ষণ করবেন যখন জরায়ুমুখ ১০ সেমি প্রসারিত হয়ে যাবে তখন প্রসবের প্রথম ধাপ সম্পূর্ণ হবে৩ যোনি দিয়ে পাতলা ও আঠালো স্রাব নিঃসরণএসময় আপনার যোনিপথ দিয়ে পাতলাআঠালো একটি স্রাব নিঃসৃত হতে পারে এর সাথে রক্তের হালকা লাল লাল ভাব থাকতে পারে এটি স্বাভাবিক এবং দুশ্চিন্তার কোনো বিষয় নয় তবে হালকা লাল লাল ভাবের চেয়ে বেশি রক্ত লক্ষ করলে দ্রুত আপনার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে হবে৪ পানি ভাঙা যদি প্রসববেদনাসহ পানি ভেঙ্গে থাকে তাহলে আপনার প্রসব প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে বলে ধারণা করা হয় যদি গর্ভাবস্থার ৩৭ সপ্তাহ অথবা তার পরে আপনার পানি ভাঙে কিন্তু এর সাথে প্রসব বেদনা শুরু না হয় সেক্ষেত্রে আপনি পানি ভাঙার জন্য ২৪ ঘন্টা অপেক্ষা করতে পারেন তারপরও প্রসব প্রক্রিয়া শুরু না হলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিন তবে ৩৭ সপ্তাহ বা ৯ মাসের আগে পানি ভেঙে গেলে তা অকাল প্রসব ঘটাতে পারে তাই এমনটা হলে যত দ্রুত সম্ভব চিকিৎসকের সহায়তা নিন৫ গর্ভের সন্তান নিচের দিকে নেমে আসতে শুরু করা সাধারণত গর্ভের সন্তান দ্বিতীয় ধাপে জরায়ু থেকে নিচে নামতে শুরু করে তবে কিছু ক্ষেত্রে প্রথম ধাপেই সক্রিয় পর্যায়ে শিশুটি এই যাত্রা শুরু করতে পারে৬ বমি অথবা বমি বমি ভাব হওয়াএই ধাপে স্বাভাবিকভাবেই মায়েদের বমি অথবা বমি বমি ভাব হতে পারে এ ছাড়া যদি আপনি এপিডুরাল অ্যানেস্থেসিয়া নিয়ে থাকেন সেটির কারণেও আপনার বমি কিংবা বমি ভাব হতে পারেপ্রথম ধাপ কতক্ষণ স্থায়ী হয়সক্রিয় প্রসব শুরু হওয়ার পর প্রথম ধাপে প্রথমবারের মতো সন্তান প্রসব করা মায়েদের ক্ষেত্রে ১২ ঘন্টা সময় পর্যন্ত লাগতে পারে তবে যেসব মায়েরা আগেও সন্তান জন্ম দিয়েছেন তাদের জন্য এই ধাপটি সাধারণত ৬ ঘন্টা স্থায়ী হয়ে থাকে দ্বিতীয় ধাপে আপনার সন্তান জরায়ু থেকে জরায়ুমুখ দিয়ে যোনিপথে নেমে আসে এবং পর্যায়ক্রমে ভূমিষ্ঠ হয় শিশুটিকে বের হয়ে আসতে সহযোগিতা করার জন্য এই পর্যায় মাকে নিজে নিজে পেটে চাপ তৈরি করে কিছুটা ধাক্কা দেওয়ার বা পুশ করার প্রয়োজন হয়প্রসব প্রক্রিয়ার দ্বিতীয় ধাপে কী কী হয়১ সংকোচনের তীব্রতা ও পুনরাবৃত্তি কমে আসবে এই ধাপের শুরুতে সক্রিয় পর্যায়ের তুলনায় জরায়ুর সংকোচন কম তীব্র হয় জরায়ু থেকে সন্তান ইতোমধ্যে কিছুটা নিচে চলে আসে দেখে এমনটা হয় বলে ধারণা করা হয় আপনি এখন আগের তুলনায় কম ঘন ঘন টান অনুভব করবেন এতে করে দুই টানের মধ্যে যে বিশ্রামটুক দরকার সেটি আপনি পেতে পারেন২ সন্তানকে নিচের দিকে ধাক্কা দেওয়ার তাগিদ অনুভব করবেন জরায়ুর সংকোচন আপনার সন্তানকে অনেকটুকু পথ নিচে নামিয়ে দেয় যখন সন্তান তলপেটের নিচের দিকে চলে আসে তখন আপনি নিজে জোরে পেটে চাপ সৃষ্টি করে সন্তানকে নিচে নামিয়ে দেওয়ার তাগিদ অনুভব করবেন অর্থাৎ এই পর্যায়ে পেটে চাপ তৈরির মাধ্যমে আপনি ধাক্কা দিয়ে সন্তানকে নিচের দিকে নামতে সাহায্য করবেনযদি আপনি এপিডুরাল অ্যানেস্থেসিয়া নিয়ে থাকেন তাহলে পুশ করার তাগিদ কম টের পেতে পারেন কিংবা নাও পেতে পারেন৩ আপনার সন্তান নিচে নেমে আসবে ও জন্মলাভ করবে জরায়ুর সংকোচন ও আপনার ধাক্কার ফলে গর্ভের সন্তান নিচে নেমে আসতে থাকে প্রথম সন্তানের ক্ষেত্রে জরায়ু থেকে নিচে যোনিপথে নামতে তুলনামূলক বেশি সময় লাগবেশিশুটি এক পর্যায়ে একেবারে নিচের দিকে নেমে আসলে তার শরীরের চাপের ফলে বাইরে থেকে আপনার যোনির চারপাশের অংশটি ফোলা দেখাবে এবং ধীরে ধীরে যোনির মুখে শিশুটির মাথার তালু দেখা যেতে থাকবে একই সাথে শিশুটির মাথার চাপের কারণে আপনার পুশ করার তাগিদ আরও বেড়ে যেতে পারে এই পর্যায়ে আপনাকে আপনার চিকিৎসক পুশ করা বা ধাক্কা দেওয়া থামাতে অথবা কমাতে বলতে পারেন এই পর্যায়ে আপনার সন্তান সাবলীলভাবে যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে যাবে এমনটাই কাম্যবেশি জোরাজোরির ফলে সন্তান বের হওয়ার সময় আপনার যোনিপথের আসে পাশের জায়গা যাকে বলে পেরিনিয়াম তা ছিড়ে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে তাই আপনাকে আপনার চিকিৎসক বা ধাত্রী প্রতি সংকোচনের সাথে লম্বা শ্বাস নিতে বলতে পারেন যাতে করে তাগিদ থাকলেও আপনি ক্ষতিকর চাপ তৈরি করে ধাক্কা না দেনএই পর্যায়ে সন্তানের বের হয়ে আসা সহজ করার জন্য আপনার চিকিৎসক বা দক্ষ ধাত্রী আপনার পেরিনিয়াম অর্থাৎ যোনি ও পায়ুপথের মাঝের জায়গাটিতে ছোটো করে কেটে দিতে পারেন এর নাম এপিসিওটমি এটিকে সাইড কাটা নামেও অভিহিত করা হয় প্রসবের পর এই কাটা জায়গাটি সেলাই করে দেওয়া হয় তবে সব ক্ষেত্রে এপিসিওটমি প্রয়োজন হয় নাধীরে ধীরে আপনার সন্তানের মাথার সবচেয়ে প্রশস্ত অংশটি এমনভাবে বের হয়ে আসবে যাতে করে মাথা আর ভেতরে ফেরত যাওয়া সম্ভব হবে না এই পর্যায়কে বলা হয় ক্রাওনিং তারপর একে একে তার কপাল নাক ও থুতনি বেরিয়ে আসে এরপর আস্তে আস্তে তার ঘাড় এবং শরীরের বাকি অংশ বের হয়ে আসেসন্তান জন্মের ১ থেকে ২ মিনিটের ভেতর নাড়িতে ক্লিপ দিয়ে তা কেটে দেওয়া হয় তারপর প্রাথমিকভাবে একবার আপনার সন্তানকে চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখবেন তারপর তাকে আপনার কোলে তুলে দেওয়া হবে আপনি সাথে সাথেই তাকে বুকের দুধ দিতে পারবেন জন্মের প্রথম এক ঘন্টার ভেতর বুকের দুধ দেওয়া সন্তানের জন্য সবচেয়ে উপকারীদ্বিতীয় ধাপ কতক্ষণ স্থায়ী হতে পারেযদি এটি আপনার প্রথম সন্তান জন্মদান হয়ে থাকে সেক্ষেত্রে এই ধাপে ২ ঘন্টার মতো সময় লাগবে যদি আপনি আগেও প্রসব করে থাকেন সেক্ষেত্রে সাধারণত ৩০ মিনিট বা এর কাছাকাছি সময় লাগতে পারে তবে আপনি এপিডুরাল অ্যানেস্থেসিয়া নিয়ে থাকলে আরও বেশি সময় লাগতে পারে তৃতীয় ধাপে আপনার জরায়ু থেকে গর্ভফুল আলাদা হয়ে বের হয়ে আসে এই গর্ভফুলের মাধ্যমেই গর্ভাবস্থায় শিশু আপনার থেকে অক্সিজেন ও পুষ্টি পেয়ে এসেছে আবার সন্তানের বর্জ্য পদার্থগুলোও বের হয়েছে এই গর্ভফুলের মাধ্যমেইগর্ভফুল দুইভাবে বের হয় আসতে পারে—১ স্বাভাবিকভাবে এক্ষেত্রে কোনো হস্তক্ষেপ না করে গর্ভফুল গর্ভ থেকে আলাদা হওয়ার জন্য অপেক্ষা করা হয় আলাদা হয়ে গেলে আপনার চিকিৎসক আবার আপনাকে একটি পুশ বা ধাক্কা দেওয়ার জন্য বলতে পারেন তবে এটি ছোটো একটি ধাক্কা যা কষ্টদায়ক হয় না গর্ভফুল নিজে নিজে আলাদা হতে বেশ খানিকটা সময় লাগতে পারে আলাদা হয়ে যাওয়ার পর কয়েক মিনিটেই এটি চাপ দিয়ে বের করে ফেলা যায়২ চিকিৎসকের সক্রিয় ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে গর্ভফুল তাড়াতাড়ি বের করার জন্য চিকিৎসক কিছু ব্যবস্থা নিতে পারেন এক্ষেত্রে সন্তান প্রসবের ১ মিনিটের ভেতর আপনাকে অক্সিটোসিন ইনজেকশন দেওয়া হবে এর ফলে আপনার জরায়ু আবার তীব্রভাবে সংকুচিত হবে চিকিৎসক তার এক হাত আপনার তলপেটের উপর রাখবেন জরায়ু যখন সংকুচিত থাকবে তখন আরেক হাত দিয়ে আপনার ক্লিপ করা নাড়ি ধরে আস্তে আস্তে টেনে গর্ভফুল বের করে আনবেনতৃতীয় ধাপে কতক্ষণ সময় লাগবেতৃতীয় ধাপের ক্ষেত্রে প্রথম প্রসব কিংবা পরবর্তী প্রসবগুলোর মধ্যে সময়ের কোনো পার্থক্য হয় না সাধারণত এই ধাপে ১৫ মিনিটের মতো সময় লাগে তবে সক্রিয় ব্যবস্থা নেওয়ার মাধ্যমে এই সময়কাল ৫ মিনিটে নামিয়ে আনা সম্ভব হয়প্রসবের বিপদ চিহ্ন প্রসবের সময় কোন কোন লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে তা জানতে প্রসবের বিপদ চিহ্নগুলো চিনে রাখুন— যোনিপথে অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়া গর্ভফুল গর্ভে থেকে যাওয়া খিঁচুনি হওয়া সন্তান প্রসব হতে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি সময় (১২ ঘণ্টার বেশি) লাগা প্রসব পরবর্তী সময়ে আপনার শারীরিক ও মানসিক সুস্বাস্থ্যই কাম্য এই সময়ে স্বাভাবিকভাবেই আপনি শারীরিক কিছু পরিবর্তন লক্ষ্য করবেন তবে প্রসব পরবর্তী সময়ে আপনার শরীরে কিছু সমস্যা বা জটিলতা দেখা দিতে পারে সমস্যাগুলোর বিষয়ে যথা সময়ে ব্যবস্থা নেওয়া না হলে তার ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে তাই এই সময়ে এই সমস্যা বা জটিলতাগুলোর লক্ষণ সম্পর্কে সতর্ক থাকতে হবেপ্রসব পরবর্তী সমস্যা ও যেসব লক্ষণ নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে—প্রসব পরবর্তী জটিলতা লক্ষণ পায়ের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধা বা ডিপ ভেইন থ্রম্বসিস পায়ের নিচের অংশে ব্যথা ফুলে যাওয়া কিংবা লাল হয়ে যাওয়া সাধারণত পায়ের নিচের অংশের পেছনের দিকে যাকে গোড়ালি বা কাফ বলে সেখানে এটি বেশি হয় ফুসফুসের রক্তনালীতে রক্ত জমাট বাঁধা বা পালমনারি এম্বোলিজম বুকে ব্যথা অথবা শ্বাসকষ্ট হওয়া প্রসবপরবর্তী রক্তক্ষরণ যোনিপথ দিয়ে হঠাৎ করে খুব বেশি রক্ত বের হওয়া সাথে দুর্বলতা ও বুক ধড়ফড় করাও থাকতে পারে ইনফেকশন গায়ে জ্বর (তাপমাত্রা ১০০ ডিগ্রীর উপরে) থাকা পেটে ব্যথা করা উচ্চ রক্তচাপ জনিত জটিলতা বা পোস্টপার্টাম প্রিএক্লাম্পসিয়া মাথা ব্যথা করা দৃষ্টিশক্তি দুর্বল হওয়া ও বমি হওয়া প্রসবপরবর্তী মানসিক ভারসাম্যহীনতা বা পোস্টপার্টাম সাইকোসিস নিজের বা সন্তানের ক্ষতি করতে চাওয়ার প্রবণতাএই সমস্যাগুলোর পরিণতি গুরুতর হতে পারে তাই এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করুনএ ছাড়া প্রসবের পরে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে ঘন ঘন প্রস্রাব হতে পারে প্রস্রাবে কিছুটা জ্বালাপোড়া থাকতে পারে প্রসবের পর স্বাভাবিকভাবেই আপনার তলপেটের নিচের দিকের পেশিগুলো আগের চেয়ে কিছুটা দুর্বল হয়ে যাবে যদি আগে থেকে হার্টে বা অন্য কোথাও কোনো অসুস্থতা থেকে থাকে তাহলে প্রসবের পর সেখানে জটিলতা দেখা দিতে পারেপ্রসব পরবর্তী বিপদ চিহ্ন প্রসবোত্তর সময়ে কিছু উপসর্গ বেশি গুরুত্ব সহকারে খেয়াল করতে হবে এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে দেরি না করে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে প্রসব পরবর্তী বিপদ চিহ্নগুলো হলো— যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব বের হওয়া যোনিপথ দিয়ে অতিরিক্ত রক্ত বের হওয়া গায়ে জ্বর আসা গর্ভাবস্থায় কতটুকু ওজন বাড়লে তা মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে সেই হিসাবটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম গর্ভধারণের আগে মায়ের ওজন ও শারীরিক গঠন কেমন ছিল তার ওপর ভিত্তি করে গর্ভকালীন ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অনেকটাই কমবেশি হতে পারেগর্ভাবস্থায় কতটুকু ওজন বাড়লে তা মা ও গর্ভের শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য সবচেয়ে উপযোগী হবে সেই হিসাবটা একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম গর্ভধারণের আগে মায়ের ওজন ও শারীরিক গঠন কেমন ছিল তার ওপর ভিত্তি করে গর্ভকালীন ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা অনেকটাই কমবেশি হতে পারেসঠিক লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ওজন বৃদ্ধির হার কম কিংবা বেশি হলে সেটি মা ও গর্ভের শিশুর জন্য বিভিন্ন ধরনের জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে[১] গর্ভাবস্থার কোন মাসে কতটুকু ওজন বাড়া উচিত আদর্শ ওজন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে করণীয় কী ওজন ঠিকমতো না বাড়লে কিংবা অতিরিক্ত বেড়ে গেলে গর্ভের শিশুর ওপর কী প্রভাব পড়বে—এমন কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এই আর্টিকেলে তুলে ধরা হয়েছে গর্ভাবস্থায় কতটুকু ওজন বৃদ্ধি পাওয়া উচিত তা অনেকাংশে নির্ভর করে গর্ভধারণের ঠিক আগে আপনার ওজন স্বাভাবিক সীমায় ছিল কি না—তার ওপর ওজন স্বাভাবিক সীমার মধ্যে ছিল কি না সেটি জানার জন্য সেই সময়ে আপনার বিএমআই কত ছিল তা হিসাব করতে হবে বিএমআই হিসাব করতে তিনটি সহজ কাজ করুন—ওজন মাপার মেশিনে আপনার ওজন কত কেজি তা দেখে নিন ইঞ্চিফিতা দিয়ে আপনার উচ্চতা মেপে নিন প্রাপ্ত ওজন ও উচ্চতা বসিয়ে নিচের নির্ধারিত ফাঁকা ঘর দুটি পূরণ করুনবিএমআই ক্যালকুলেটর নিচে আপনার উচ্চতা ও ওজন ইনপুট করে আপনার বিএমআই জেনে নিন উচ্চতা ফুট ইঞ্চ ওজন কেজি ভারতীয় উপমহাদেশের নারীপুরুষদের ক্ষেত্রেএই ফলাফলই আপনার বিএমআইএবার এই বিএমআই অনুযায়ী গর্ভকালীন সময়ে আপনার বাড়তি ওজন কেমন হওয়া উচিত তা দেখে নিন[২] আপনার গর্ভে শুধুমাত্র একটি শিশু থাকলে এই নিয়মটি আপনার জন্য প্রযোজ্য হবে[৩] যমজ শিশুদের ক্ষেত্রে হিসাবটি ভিন্ন যা এর পরের অংশে তুলে ধরা হয়েছেগর্ভধারণের ঠিক আগের বিএমআই গর্ভধারণের আগের ওজনের ধরন গর্ভাবস্থায় প্রয়োজনীয় বাড়তি ওজন ১৮৫ এর কম আন্ডারওয়েট বা অস্বাভাবিকভাবে কম ওজন ১২৫–১৮ কেজি ১৮৫ থেকে ২৪৯ স্বাভাবিক ওজন ১১৫–১৬ কেজি ২৫ থেকে ২৯৯ অতিরিক্ত ওজন ৭–১১৫ কেজি ৩০ অথবা তার বেশি স্থূল বা Obese ৫–৯ কেজিমোট কথা হলো গর্ভধারণের আগে ওজন অস্বাভাবিকভাবে কম হলে স্বাভাবিক ওজনের নারীদের তুলনায় গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন কিছুটা বেশি বাড়ানো প্রয়োজন তেমনি গর্ভধারণের আগে আপনার ওজন স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি হলে এই সময়ে বাড়তি ওজন তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম হওয়া উচিততবে আপনার যদি—গর্ভধারণের আগে থেকে স্থূলতা থাকে অর্থাৎ বিএমআই ৩০ বা তার বেশি হয় এবং গর্ভকালীন সময়ে আপনার ওজন তেমন নাও বাড়ে কিংবা আপনার জন্য নির্ধারিত লক্ষ্যমাত্রার তুলনায় ওজন বৃদ্ধির পরিমাণ কম হয় এবং গর্ভকালীন চেকআপে বিভিন্ন পরীক্ষানিরীক্ষার মাধ্যমে যদি দেখা যায় যে আপনার শিশু সুস্থ–স্বাভাবিক ভাবে বেড়ে উঠছেতাহলে কেবল আপনার ও গর্ভের শিশুর সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বাড়াতে ওপরের লক্ষ্যমাত্রা অনুযায়ী ওজন বাড়ানোর চেষ্টা না করাই শ্রেয় কেননা ওপরের তিনটি বিষয় ঠিক থাকলে ওজন বৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছানোর মাধ্যমে মা ও শিশুর সুস্থ থাকার সম্ভাবনা বাড়ার পক্ষে কোনো প্রমাণ নেই[৪]যমজ শিশুর ক্ষেত্রেত্রৈমাসিক অনুযায়ী ওজন বৃদ্ধিগর্ভাবস্থার প্রথম দিকে সাধারণত শরীরে নানান ধরনের পরিবর্তনের কারণে ওজন বাড়তে থাকে যেমন শরীরে রক্ত ও অন্যান্য তরল পদার্থের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া এবং স্তনের আকার বেড়ে যাওয়াসময়ের সাথে সাথে এক সময় আপনার শিশুর দেহের বিভিন্ন অঙ্গ পুরোপুরি ভাবে তৈরি হয়ে যায় এবং সে আপনার গর্ভে ধীরে ধীরে বড় হতে থাকে তার দেহে চর্বি বা ফ্যাট জমতে শুরু করে গর্ভধারণের ২৮তম সপ্তাহের পর থেকে মূলত গর্ভের শিশুর বেড়ে ওঠার কারণেই আপনার শরীরের ওজন বাড়তে থাকেএসব কারণ বিবেচনা করে গর্ভধারণের ১৩তম সপ্তাহের পর থেকে ধীরে ধীরে এবং নির্দিষ্ট হারে আপনার ওজন বাড়তে থাকলে তা আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য সবচেয়ে ভালো হয়[৬]গর্ভাবস্থার প্রথম ত্রৈমাসিকে অর্থাৎ প্রথম তিন মাসে গর্ভবতীদের ওজন ০৫–২ কেজি পর্যন্ত বাড়তে পারে[৭] আবার কারও কারও ক্ষেত্রে গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে ওজন নাও বাড়তে পারে[৮]গর্ভাবস্থার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকে অর্থাৎ ৪–৯ মাস পর্যন্ত গর্ভবতীর ওজন বাড়ার হার কেমন হওয়া উচিত তা তাদের গর্ভধারণের পূর্বের বিএমআই এর ওপর নির্ভর করে গর্ভধারণের আগের বিএমআই অনুযায়ী নিচের ছক থেকে আপনি আপনার দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিকের ওজন বাড়ার লক্ষ্যমাত্রা সহজেই বের করে ফেলতে পারেন—গর্ভধারণের ঠিক আগের বিএমআই গর্ভধারণের আগের ওজনের ধরন প্রতি সপ্তাহে ওজন বাড়ার হার (দ্বিতীয় ও তৃতীয় ত্রৈমাসিক) ১৮৫ এর কম আন্ডারওয়েট বা অস্বাভাবিক কম ওজন প্রায় ০৫ কেজি ১৮৫ থেকে ২৪৯ স্বাভাবিক ওজন প্রায় ০৪ কেজি ২৫ থেকে ২৯৯ অতিরিক্ত ওজন প্রায় ০৩ কেজি ৩০ অথবা তার বেশি স্থূল বা ওবিজ প্রায় ০২ কেজি মা ও গর্ভের শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করতে গর্ভাবস্থায় সঠিক মাত্রায় ওজন বৃদ্ধি খুব গুরুত্বপূর্ণ ওজন বৃদ্ধির পরিমাণ কমবেশি হলে মা ও শিশুর নানান ধরনের স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে এমনকি শিশুর জন্মের বহু বছর পরেও এর ক্ষতিকর প্রভাব থেকে যেতে পারেগর্ভাবস্থায় অস্বাভাবিক কম ওজনগর্ভকালীন সময়ে অপুষ্টি ও অন্যান্য কারণে ঠিকমতো ওজন না বাড়লে আপনার গর্ভের শিশু নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অপরিণত অবস্থায় জন্মগ্রহণ করতে পারে ডাক্তারি ভাষায় এমন শিশুদের প্রিম্যাচিউর বলা হয়একই সাথে আপনার নবজাতক শিশুর ওজন স্বাভাবিকের তুলনায় অনেক কম (২৫ কেজির কম) হতে পারে কম ওজনের শিশুরা জন্মের পর থেকেই অনেক দুর্বল থাকে এবং নানান ধরনের জটিলতায় ভোগে[৯] এমনকি কম ওজন নিয়ে জন্মগ্রহণ করা শিশুদের মৃত্যুহারও তুলনামূলকভাবে অনেক বেশিকম ওজনের শিশুরা জন্মের পর পরই বিভিন্ন জটিলতার মুখোমুখি হয় যেমন—জন্মের পর পরই শরীরের তাপমাত্রা অনেক কমে যাওয়া মায়ের বুকের দুধ পান করতে না পারা তীব্র শ্বাসকষ্ট হওয়া শরীরের বিভিন্ন অঙ্গের মারাত্মক ত্রুটি হওয়া যেমন চোখ হার্ট ফুসফুস ও পরিপাক তন্ত্রের বিভিন্ন ত্রুটি সহজেই নানান ধরনের অসুখ–বিসুখে আক্রান্ত হওয়াপ্রিম্যাচিউর শিশুদের জন্মের পর পরই চিকিৎসার জন্য বিশেষায়িত শিশু হাসপাতাল কিংবা ইউনিট (যেমন নিওনেটাল আইসিইউ) অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও নার্সের প্রয়োজন হয় সঠিক চিকিৎসার অভাবে শিশু মৃত্যুবরণ করতে পারে এ ছাড়া এই শিশুরা বড় হওয়ার পরেও তাদের গঠন ও বিকাশে নানান ধরনের ত্রুটি দেখা যেতে পারে যেমন—শারীরিক ও বুদ্ধিবৃত্তিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হওয়া[১০] প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস হার্ট অ্যাটাক স্ট্রোক ও ক্যান্সারের মতো রোগে আক্রান্ত হওয়া[১১] কানে শোনা চোখে দেখা হাঁটা–চলা ও হাতের সূক্ষ্ম কাজ (যেমন কলম ধরা) করতে অসুবিধা হওয়াগর্ভাবস্থায় অতিরিক্ত ওজন বৃদ্ধিগর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস এবং সুষম খাবার তালিকা মেনে চলা সম্ভব না হলে ওজন অস্বাভাবিকভাবে বেড়ে যেতে পারে এটি মা ও শিশু উভয়ের স্বাস্থ্যের জন্যই ক্ষতিকর হতে পারেএসব জটিলতার মধ্যে রয়েছে[১২]—উচ্চ রক্তচাপ প্রিএক্লাম্পসিয়া গর্ভকালীন ডায়াবেটিস রক্তনালীতে রক্ত জমাট বেঁধে হার্ট অ্যাটাক ও স্ট্রোকের মতো মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি হওয়া সিজার অপারেশন করানোর প্রয়োজন হওয়া গর্ভপাত বা গর্ভের শিশু নষ্ট হওয়া প্রসবের পরে গর্ভাবস্থার আগের ওজনে ফিরে যেতে দেরি হওয়ামায়ের পাশাপাশি গর্ভের শিশুও নানান ধরনের সমস্যায় ভুগতে পারে যেমন—নির্দিষ্ট সময়ের আগেই অপরিণত (প্রিম্যাচিউর) অবস্থায় জন্মগ্রহণ করা গর্ভের শিশুর আকার অস্বাভাবিক বড় হওয়া জন্মগত ত্রুটি দেখা দেওয়া মৃত শিশু জন্ম হওয়া ভবিষ্যতে অতিরিক্ত ওজনের অধিকারী হওয়াউল্লেখ্য অতিরিক্ত ওজন কমানোর জন্য গর্ভাবস্থায় নিয়মিত খাবার খাওয়ার পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার চিন্তা করা যাবে না ১ ক্যালরি চাহিদা অনুযায়ী পুষ্টিকর খাবার খানগর্ভধারণ করলেই যে একসাথে দুইজনের সমপরিমাণ খাবার খেতে হবে—এমনটা নয় স্বাস্থ্যকর ওজন বৃদ্ধি নিশ্চিত করতে অস্বাস্থ্যকর অতিরিক্ত চিনি ও তেলচর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া যতটা সম্ভব বাদ দিয়ে দিন প্রচুর পরিমাণে শাকসবজি ও ফলমূল খানগর্ভাবস্থায় প্রথম তিন মাসে সাধারণত বাড়তি খাবারের প্রয়োজন হয় না[১৩] তবে এর পরের মাসগুলোতে আপনাকে স্বাভাবিক সময়ের তুলনায় কিছুটা বেশি খাবার খেতে হবেপ্রয়োজন মাফিক পুষ্টিকর খাবার খেলে আপনার গর্ভকালীন বাড়তি ওজন স্বাভাবিক সীমার মধ্যে থাকবে গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে আপনি কী ধরনের খাবার খাচ্ছেন সে বিষয়ে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিনপড়ুন ক্যালরি ও মাস অনুযায়ী গর্ভবতীর খাবার তালিকা২ নিয়মিত নিজের ওজন মাপুনগর্ভাবস্থার শুরু থেকেই নিয়মিত নিজের ওজন মাপুন এতে করে আপনার ওজন কী হারে বাড়ছে সেটি সহজেই বুঝতে পারবেন যদি প্রতি সপ্তাহে ওজন মাপেন তাহলে সপ্তাহের একটা নির্দিষ্ট দিন ও সময় বেছে নিতে পারেন যেমন প্রতি শুক্রবার সকালে ঘুম থেকে উঠে প্রস্রাব করার পর খালি পেটে ওজন মাপতে পারেন চাইলে প্রতিদিনও ওজন মাপতে পারেন সেক্ষেত্রেও এমন নির্ধারিত সময়ে ওজন মেপে নিতে পারেনতবে বার বার ওজন মেপে অস্থির হয়ে যাবেন না বিভিন্ন কারণে আপনার ওজন কমবেশি হতে পারে এজন্য অস্থির না হয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলুনপ্রতি গর্ভকালীন চেকআপে আপনার ওজন ঠিকঠাক মতো বাড়ছে কি না সেই বিষয়ে তার মতামত নিন ওজন বৃদ্ধিতে কোনো ধরনের সমস্যা থাকলে খাবার তালিকা ও ব্যায়াম নিয়ে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন এবং তার নির্দেশনা মেনে চলুন৩ নিয়মিত ব্যায়াম করুনগবেষণায় দেখা গিয়েছে যে গর্ভাবস্থায় নিয়মিত ব্যায়াম করা নিরাপদ[১৪] গর্ভবতী নারীদের সপ্তাহে ২৫ ঘণ্টা মাঝারি তীব্রতার অ্যারোবিক শরীরচর্চাকে করা উচিত[১৫] এমন ব্যায়ামের মধ্যে রয়েছে দ্রুত হাঁটা বাগান করা সাঁতার কাটা নাচ ও সাইকেল চালানো গর্ভাবস্থায় আপনার পছন্দমতো এমন যেকোনো ব্যায়াম বেছে নিতে পারেন এ ছাড়া আগে থেকে ভারী ব্যায়াম করার অভ্যাস থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে সেটাও চালিয়ে যেতে পারেনসপ্তাহে ৫ দিন ৩০ মিনিট ধরে ব্যায়াম করলেই আপনি এই লক্ষ্যমাত্রায় পৌঁছাতে পারবেন আবার চাইলে দিনে ১০ মিনিট ধরে কয়েক ভাগে ব্যায়াম করে নিতে পারেন এই রুটিনের পুরোটাই নির্ভর করবে আপনার স্বাচ্ছন্দ্যের ওপরআপনার গর্ভধারণের আগে থেকে ব্যায়ামের অভ্যাস না থাকলেও কোনো সমস্যা নেই গর্ভাবস্থায় নিশ্চিন্তে ব্যায়াম করা শুরু করতে পারবেন তবে এক্ষেত্রে ধীরে ধীরে শুরু করে সময়ের সাথে আপনার সহনশীলতা বাড়ান সহজ কিছু কাজ প্রতিদিনের রুটিনে যোগ করতে পারেন যেমন বাজারে কিংবা দোকানে গেলে একটু বেশি ঘুরে হেঁটে যাওয়ার রাস্তাটি বেছে নিতে পারেন লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি বেছে নিন মূল কথা হলো ব্যায়ামের সব ধরনের উপকার পেতে প্রতিদিন একটু একটু করে শরীরচর্চার পরিমাণ বাড়ানোর চেষ্টা করুন এবং এটি নিয়মিত রুটিনের মধ্যে নিয়ে আসুনতবে এসময়ে নতুন করে ভারী ধরনের কোনো ব্যায়াম শুরু না করাই ভালো সেই সাথে যেসব এক্সারসাইজ করলে আপনার পড়ে যাওয়ার অথবা আঘাত পাওয়ার ঝুঁকি থাকে (যেমন বক্সিং ব্যাডমিন্টন ও কারাতে) সেগুলো এসময়ে এড়িয়ে চলবেন গর্ভাবস্থায় ঠিক কোন ধরনের এক্সারসাইজগুলো আপনার জন্য নিরাপদ হবে তা আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলে নির্ধারণ করে নিতে পারলে সবচেয়ে ভালো হয়৷গর্ভাবস্থায় ব্যায়াম করার সময়ে স্বাভাবিক সহ্যক্ষমতার বাইরে ব্যায়াম করা থেকে বিরত থাকুন আপনার কোনো গর্ভকালীন জটিলতা থাকলে ব্যায়াম করার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন সেক্ষেত্রে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের মতামত মেনে চলুনপড়ুন গর্ভাবস্থায় কোন ব্যায়াম নিরাপদ গর্ভের ছোট্ট শিশু ধীরে ধীরে বেড়ে ওঠার কারণে মূলত গর্ভাবস্থায় আপনার ওজন বেড়ে যায়[১৬] এ ছাড়াও এসময়ে আপনার শরীরের বেশ কিছু অংশে পরিবর্তন ঘটে এসব কারণেও আপনার ওজন বাড়তে থাকে যেমন—শরীরে রক্ত ও পানির পরিমাণ বেড়ে যাওয়া শরীরে চর্বি বা ফ্যাট জমা হওয়া অ্যামনিওটিক ফ্লুইড তৈরি হওয়া যা গর্ভের ভেতরে শিশুকে ঘিরে থাকে স্তনের আকার বেড়ে যাওয়া জরায়ুর আকার বেড়ে যাওয়া প্লাসেন্টা বা গর্ভফুল সৃষ্টি হওয়া গর্ভবতী নারীর শারীরিক অবস্থার সঠিক ও বিশদ ধারণা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়ে থাকে এর মধ্যে রয়েছে কিছু রক্ত পরীক্ষা যেগুলো গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সাধারণ একটি রক্ত পরীক্ষা থেকেই আপনার ও আপনার গর্ভের সন্তানের সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য পাওয়া যায় পরীক্ষাগুলো বিভিন্ন রোগ নির্ণয় এবং যথাসময়ে চিকিৎসা শুরু করতে সাহায্য করতে পারেগর্ভবতী নারীর শারীরিক অবস্থার সঠিক ও বিশদ ধারণা পাওয়ার জন্য বিভিন্ন পরীক্ষা করা হয়ে থাকে এর মধ্যে রয়েছে কিছু রক্ত পরীক্ষা যেগুলো গর্ভাবস্থায় অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে সাধারণ একটি রক্ত পরীক্ষা থেকেই আপনার ও আপনার গর্ভের সন্তানের সুস্বাস্থ্যের জন্য প্রয়োজনীয় অনেক তথ্য পাওয়া যায় পরীক্ষাগুলো বিভিন্ন রোগ নির্ণয় এবং যথাসময়ে চিকিৎসা শুরু করতে সাহায্য করতে পারে গর্ভাবস্থায় সাধারণত নিচের রক্ত পরীক্ষাগুলো করাতে হয়—রক্তের গ্রুপ রক্তের হিমোগ্লোবিন ও বিভিন্ন রক্ত কণিকার সংখ্যা ইনফেকশনের অস্তিত্ব যেমন হেপাটাইটিস বি ও সিফিলিস রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা থাইরয়েড হরমোনের মাত্রা রক্তের গ্রুপ সাধারণত এ (A) বি (B) এবি (AB) অথবা ও (O)—এই ৪টি গ্রুপের মধ্যে যেকোনো একটি হয় গ্রুপ পরীক্ষা করার মাধ্যমে আপনার রক্তের গ্রুপ কোনটি এবং তা পজিটিভ নাকি নেগেটিভ সেটা নির্ণয় করা যায়সময়মতো সঠিক চিকিৎসা দেওয়ার জন্য আপনার রক্তের সঠিক গ্রুপ জানা থাকা জরুরি কেননা গর্ভাবস্থায় অথবা প্রসবের সময়ে যেকোনো কারণে রক্তক্ষরণ হলে আপনাকে দ্রুত রক্তপ্রদানের প্রয়োজন হতে পারেজরুরি অবস্থায় রক্তের গ্রুপ পরীক্ষা করতে হলে আপনার চিকিৎসায় বিলম্ব হতে পারে যার ফলাফল ভয়াবহ হতে পারে তাই আগে থেকে রক্তের গ্রুপিং করে রাখুন এবং এর রিপোর্ট যত্ন সহকারে সংরক্ষণ করুন প্রতি চেকআপে ও ডেলিভারির সময়ে কাগজটি মনে করে নিয়ে যাবেনউল্লেখ্য কিছু বিরল ক্ষেত্রে রক্তের গ্রুপ পরিবর্তিত হয়ে যেতে পারে তাই সতর্কতাবশত ডেলিভারির সম্ভাব্য তারিখের ২৩ সপ্তাহ আগে রক্তের গ্রুপ আবারও পরীক্ষা করিয়ে নিনপজিটিভ বনাম নেগেটিভ রক্তের গ্রুপরক্তের গ্রুপ পরীক্ষার সময়ে যদি আপনার রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ দেখা যায় অর্থাৎ নিচের যেকোনো গ্রুপের হয় তাহলে বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে—এ নেগেটিভ (A ve) বি নেগেটিভ (B ve) এবি নেগেটিভ (AB ve) ও নেগেটিভ (O ve)এর কারণ হলো শিশুর রক্তের গ্রুপ মা ও বাবার রক্তের গ্রুপের ওপর নির্ভর করে পজিটিভ অথবা নেগেটিভ হতে পারে যদি গর্ভের সন্তানের রক্ত পজিটিভ গ্রুপের হয় (যেমন এ পজিটিভ) কিন্তু মায়ের রক্ত নেগেটিভ গ্রুপের হয় (যেমন এ নেগেটিভ) তখন গর্ভের শিশুর মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতার—এমনকি মৃত্যুবরণ করার আশংকা থাকে ডাক্তারি ভাষায় একে আরএইচ (Rh) ইনকম্প্যাটিবিলিটি বলা হয়এক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর পজিটিভ গ্রুপের রক্ত মায়ের শরীরের কাছে অপরিচিত হয়ে থাকে এর ফলে মায়ের রক্তে শিশুর অপরিচিত রক্তের বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি হয় এই অ্যান্টিবডি পজিটিভ রক্তকে শরীর থেকে দূর করার জন্য শিশুর রক্ত কণিকা ধ্বংস করেআগে কখনো গর্ভপাত না হলে অথবা গর্ভাবস্থায় জরায়ুর ভেতরে রক্তপাত না হলে সাধারণত গর্ভের প্রথম শিশুর ওপর আরএইচ ইনকম্প্যাটিবিলিটি এর কোনো প্রভাব পড়ে না তবে পরবর্তীতে পজিটিভ রক্তের অধিকারী শিশু গর্ভে আসলে শিশুর নানান স্বাস্থ্য জটিলতা দেখা দিতে পারেএক্ষেত্রে গর্ভের শিশুর রক্তশূন্যতা হতে পারে যা থেকে শিশুর অক্সিজেনের মারাত্মক অভাব সৃষ্টি হতে পারে আরও কিছু জটিলতা (যেমন জন্মের পর সন্তানের রক্ত কণিকা ভেঙ্গে রক্তশূন্যতা হওয়া নবজাতক শিশুর জন্ডিস হওয়া) দেখা দিতে পারে কিছু ক্ষেত্রে শিশু গর্ভেই অথবা জন্মগ্রহণের পর পরই মারা যায়আরএইচ ইনকম্প্যাটিবিলিটি প্রতিরোধ করতে রক্তের গ্রুপ নির্ণয় করা গুরুত্বপূর্ণ সাধারণত মায়ের রক্তের গ্রুপ নেগেটিভ হলে প্রথম সন্তান গর্ভে থাকাকালেই মাকে অ্যান্টি ডি ইনজেকশন বা আরএইচ ইমিউনোগ্লোবিউলিন দেওয়া হবে এটি সাধারণত গর্ভাবস্থার ২৮তম সপ্তাহে দেওয়া হয়[১] অনেকসময় ৩৪তম সপ্তাহেও আরেকবার ইনজেকশন দেওয়া হয়সেই সাথে প্রতিবার পজিটিভ রক্তের গ্রুপের সন্তান ডেলিভারির প্রথম ৭২ ঘন্টার মধ্যে আরেকবার অ্যান্টি ডি ইনজেকশন নিতে হবে গর্ভবতীর যদি কোনো রক্তক্ষরণ পেটে আঘাত লাগা অথবা গর্ভপাতের ঘটনা ঘটে থাকে সেক্ষেত্রেও অ্যান্টি ডি ইনজেকশন নিতে হবে সিবিসি (CBC) পরীক্ষায় মূলত রক্তে হিমোগ্লোবিনের পরিমাণ দেখা হয় এই পরিমাণ দেখে আপনার রক্তশূন্যতা আছে কি না সেটা নির্ণয় করা যায় সিবিসিতে হিমোগ্লোবিনের পাশাপাশি রক্তের লোহিত কণিকার পরিমাণ ও আকার সম্পর্কিত তথ্যও উঠে আসে এসব তথ্য থেকে আপনার রক্তশূন্যতার পেছনে কী কারণ থাকতে পারে সেটা সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায় কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে—আয়রনের অভাব ভিটামিনের অভাব ও থ্যালাসেমিয়া নামক বংশগত রোগরক্তশূন্যতা ধরা পড়লে তার পেছনের কারণ নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার আরও কিছু পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিবেন যেমন আয়রন প্রোফাইল পিবিএফ (PBF) হিমোগ্লোবিন ইলেক্ট্রোফোরেসিস ভিটামিন বি১২ ও ফোলেট লেভেল এরপর ফলাফল অনুযায়ী চিকিৎসা সংক্রান্ত উপদেশ দিবেনএমন উপদেশের মধ্যে থাকতে পারে খাবার তালিকায় নির্দিষ্ট কিছু খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেওয়া বাড়তি আয়রনযুক্ত ট্যাবলেট সেবন করা শিশুর ব্রেইনের ত্রুটি প্রতিরোধে অধিক ডোজে ফলিক এসিড খাওয়া এবং ক্ষেত্রবিশেষে গর্ভবতীকে রক্তপ্রদান করাগর্ভাবস্থায় আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা গর্ভকালীন সময়ে আপনার শরীরে আয়রনের চাহিদা অনেকটা বেড়ে যায় গর্ভের শিশুর সঠিক বিকাশ ও সুস্থ প্রসবের জন্য গর্ভবতীর আয়রনের চাহিদা মেটানো খুব গুরুত্বপূর্ণ এই চাহিদা সঠিকভাবে পূরণ করতে না পারলে গর্ভবতী মায়ের আয়রনের অভাবজনিত রক্তশূন্যতা হতে পারে সেই সাথে গর্ভের শিশুর নানান স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি হতে পারে পড়ুন গর্ভাবস্থায় আয়রনউল্লেখ্য সিবিসি পরীক্ষায় রক্তের অন্যান্য কণিকা (যেমন শ্বেত রক্তকণিকা ও প্লেইটলেট) সম্পর্কিত তথ্যও উঠে আসে শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা ইনফেকশন চিহ্নিত করতে এবং প্লেটলেটের সংখ্যা রক্ত জমাটের সমস্যা চিহ্নিত করতে সাহায্য করে এই পরীক্ষাটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারে HBsAg নামে পরিচিত এর সাহায্যে শরীরে হেপাটাইটিস বি ইনফেকশনের উপস্থিতি নির্ণয় করা যায় HBsAg যদি পজিটিভ আসে তার অর্থ আপনি হেপাটাইটিস বি ভাইরাসে আক্রান্তহেপাটাইটিস বি ভাইরাস লিভারের প্রদাহ থেকে শুরু করে বিভিন্ন দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা এমনকি লিভার ক্যান্সার ঘটাতে পারে এই ইনফেকশন আপনার কাছ থেকে গর্ভের সন্তানে ছড়িয়ে পড়তে পারে এমন শিশুদের আজীবন এই ইনফেকশনে ভোগার সম্ভাবনা অনেক বেশি কিন্তু শিশুকে যদি সঠিকভাবে প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন দেওয়া হয় তাহলে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এই ঘটনা প্রতিরোধ করা যায়আপনার হেপাটাইটিস বি পরীক্ষার ফলাফল যদি পজিটিভ আসে তাহলে আপনাকে গর্ভাবস্থায় বিশেষ তত্ত্বাবধানে রাখা হবে প্রসবের সময়েও বিশেষ সতর্কতা অবলম্বন করা হবে আপনার শিশুকে জন্মের পর পর হেপাটাইটিস বি এর প্রয়োজনীয় ভ্যাকসিন ও ইনজেকশন দেওয়া হবে এতে শিশুর হেপাটাইটিস বি জনিত দীর্ঘমেয়াদি জটিলতায় ভোগার সম্ভাবনা কমে আসবে এই পরীক্ষার নাম ভিডিআরএল টেস্ট এই পরীক্ষায় আপনার সিফিলিস নামক রোগ আছে কি না তা পরীক্ষা করা হয় গর্ভবতী নারী সিফিলিসে আক্রান্ত হলে এর জীবাণু তার গর্ভের সন্তানে ছড়িয়ে পড়ার আশংকা থাকেসিফিলিস একটি যৌনবাহিত রোগ এটি অনেক ক্ষেত্রে দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্য জটিলতা তৈরি করতে পারে শিশুর শরীরে ছড়িয়ে পড়লে তা থেকে নানান মারাত্মক স্বাস্থ্য জটিলতা হতে পারে এমনকি গর্ভপাত অথবা শিশুর মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারেপেনিসিলিন নামক একটি সহজলভ্য অ্যান্টিবায়োটিক ইনজেকশনের সাহায্যে গর্ভের শিশুর সিফিলিসের প্রতিরোধ করা যায় যত তাড়াতাড়ি এর চিকিৎসা শুরু করা হবে গর্ভের শিশুর মাঝে এটি ছড়িয়ে পড়ার আশংকা তত কমবে তাই সময়মতো পরীক্ষা করে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী শিশুর চিকিৎসা শুরু করা প্রয়োজন রক্তের সুগার পরীক্ষা করার বিভিন্ন পদ্ধতি রয়েছে আমাদের দেশে ওজিটিটি (OGTT) বা ওরাল গ্লুকোজ টলারেন্স টেস্ট নামক বিশেষ পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভবতীর রক্তে সুগারের লেভেল পরিমাপ করা হয় এই পরীক্ষার মাধ্যমে গর্ভবতীর ডায়াবেটিস আছে কি না তা নির্ণয় করা হয়গর্ভাবস্থায় প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিস ধরা পড়লে একে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস বলে এটি সাধারণত প্রসবের পর নিজেই সেরে যায় এই পরীক্ষার মাধ্যমে একদিকে গর্ভকালীন ডায়াবেটিস নির্ণয় করা যায় অন্যদিকে গর্ভধারণের আগে থেকে ডায়াবেটিক—এমন নারীদের রক্তের সুগারের লেভেল সম্পর্কেও জানা যায়[৪]গর্ভবতীর ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে না থাকলে মা ও শিশুর গর্ভকালীন প্রসবকালীন ও প্রসবপরবর্তী বিভিন্ন গুরুতর জটিলতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় তাই আগে থেকে ডায়াবেটিস থাকলে কিংবা গর্ভাবস্থায় প্রথমবারের মতো ডায়াবেটিস ধরা পড়লে উভয় ক্ষেত্রেই ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসা নিতে হবে এসময়ে ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী খাওয়াদাওয়া ব্যায়াম ও ডায়াবেটিসের ঔষধ সংক্রান্ত নির্দেশনা মেনে চলা এবং নিয়মিত রক্তের সুগার পর্যবেক্ষণে রাখা খুব গুরুত্বপূর্ণবাংলাদেশে সাধারণত অন্তত দুইবার ওজিটিটি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেওয়া হয় প্রথম ওজিটিটি পরীক্ষা প্রথম গর্ভকালীন চেকআপের সময়ে অন্যান্য রক্ত পরীক্ষার সাথে একসঙ্গে করে ফেলা হয় এরপর গর্ভাবস্থার ২৪তম–২৮তম সপ্তাহের ভেতরে আরেকবার ওজিটিটি পরীক্ষা করাতে হয় এ ছাড়া গর্ভাবস্থায় ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকলে ২৪তম–২৮তম সপ্তাহের আগেই ওজিটিটি করানোর পরামর্শ দেওয়া হতে পারে উল্লেখ্য ওজিটিটি পরীক্ষার বিশেষ নিয়ম রয়েছে তাই পরীক্ষার আগে সেই অনুযায়ী প্রস্তুতি নিয়ে যেতে হবে থাইরয়েড আমাদের গলায় থাকা একটি গ্রন্থি যা কিছু গুরুত্বপূর্ণ হরমোন তৈরি করে এই হরমোনগুলো আমাদের দেহের প্রায় সব কার্যক্রম স্বাভাবিক রাখতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেথাইরয়েডের কার্যক্রম নিয়ন্ত্রণ করে টিএসএইচ (TSH) বা থাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন রক্তে এর পরিমাণ বেশি হলে ডাক্তারি ভাষায় তাকে হাইপোথাইরয়েডিজম বলে আর মাত্রা স্বাভাবিকের চেয়ে কম হলে তাকে হাইপারথাইরয়েডিজম বলেচিকিৎসার অভাবে দুটি রোগই শিশুর বিভিন্ন স্বাস্থ্য জটিলতা সৃষ্টি করতে পারে তাই থাইরয়েড পরীক্ষা করে আগেভাগে রোগ ধরে ফেলে সঠিক চিকিৎসা শুরু করা যায়থাইরয়েডের সমস্যার ধরনের ওপর নির্ভর করে ডাক্তার আপনাকে ঔষধ সেবনের পরামর্শ দিবেন আগে থেকে থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে তিনি ঔষধের ডোজ পরিবর্তন করে দিতে পারেন কিছু ক্ষেত্রে আবার চলমান ঔষধের ডোজ সাময়িকভাবে বন্ধ করতে পারেনএ ছাড়া তিনি গর্ভাবস্থায় ও প্রসবের পরে আপনাকে নির্দিষ্ট সময় পর পর থাইরয়েড হরমোনের পরীক্ষা করার পরামর্শ দিবেন সেই সাথে শিশুর জন্মের পর তার রক্ত নিয়েও থাইরয়েড হরমোনের পরিমাণ কমবেশি আছে কি না নির্ণয়ের পরীক্ষা করা হবে গর্ভাবস্থার বিভিন্ন সময়ে রক্ত পরীক্ষা করে রক্তের বিভিন্ন উপাদান থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হয় সাধারণত নিচের সময়কাল অনুযায়ী এসব রক্ত পরীক্ষা করানো হয়—গর্ভধারণের পর যত দ্রুত সম্ভবগর্ভধারণের পর প্রথম সাক্ষাতেই ডাক্তার আপনাকে রক্ত পরীক্ষা প্রস্রাব পরীক্ষা ও আলট্রাসনোগ্রাফি করানোর পরামর্শ দিবেন এসময়ে আপনার রক্ত নিয়ে এ পর্যন্ত আলোচনা করা সব রক্ত পরীক্ষাই করানো হবে কোন পরীক্ষা কখন ও কীভাবে করাতে হবে সেই সম্পর্কিত তথ্যগুলো চেকআপের সময়ে ডাক্তারের কাছ থেকে জেনে নিনগর্ভধারণের পর যত দ্রুত সম্ভব প্রথম চেকআপে যাওয়া জরুরি যত দ্রুত গর্ভকালীন চেকআপ শুরু করবেন তত দ্রুত আপনার ও গর্ভের শিশুর জন্য সঠিক পদক্ষেপগুলো নিতে পারবেন তবে প্রথম চেকআপে যেতে যেন গর্ভধারণের প্রথম তিন মাসের বেশি সময় পার হয়ে না যায় সেটি নিশ্চিত করতে হবেগর্ভাবস্থার ২৪ থেকে ২৮ সপ্তাহের ভেতরএসময়ে আপনার রক্তের হিমোগ্লোবিন আবার পরীক্ষা করা হবে সেই সাথে প্রস্রাবও পরীক্ষা করা হবেকিছু ক্ষেত্রে প্রথম ওজিটিটি ফলাফল স্বাভাবিক হওয়া সত্ত্বেও ২৪–২৮ সপ্তাহের মধ্যে আবারও পরীক্ষা করতে হতে পারে যেমন—যদি আপনার গর্ভাবস্থা সংক্রান্ত বাড়তি ঝুঁকি থাকে যদি পূর্বের কোনো গর্ভাবস্থায় আপনার গর্ভকালীন ডায়াবেটিস হয়ে থাকে যদি আপনার পরিবারে কারোর ডায়াবেটিস থেকে থাকে যদি আপনি স্থুলতায় ভুগেনগর্ভাবস্থার ৩২ সপ্তাহএসময়ে আবারও আপনার রক্তের হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করা হবে সেই সাথে প্রস্রাবও পরীক্ষা করা হবেগর্ভাবস্থার ৩৬ থেকে ৩৮ সপ্তাহের ভেতরসবকিছু স্বাভাবিক থাকলে গর্ভাবস্থার এই সময়ে শেষবারের মতো আপনার রক্তের হিমোগ্লোবিন পরীক্ষা করা হবে গর্ভবতী নারীদের রক্তশূন্যতা দেখা দেওয়া খুব কমন বলে এই পরীক্ষাটি বার বার করা হয়ে থাকে এই সময়ের মধ্যে আপনার প্রস্রাব পরীক্ষা ও আলট্রাসনোগ্রাফিও করানো হবেব্যতিক্রমকিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার আপনাকে এই সময়কালের বাইরে ভিন্ন শিডিউলে পরীক্ষানিরীক্ষা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন এমনকি কিছু পরীক্ষা পুনরায় করার পরামর্শও দিতে পারেন এমন ক্ষেত্রের মধ্যে রয়েছে—গর্ভকালীন কোনো পরীক্ষার ফলাফল অস্বাভাবিক আসা গর্ভাবস্থায় নতুন করে কোনো রোগ ধরা পড়া আগে থেকে কোনো স্বাস্থ্য জটিলতা থাকাএ ছাড়া প্রয়োজন অনুযায়ী বিভিন্ন সময়ে কিছু বিশেষ পরীক্ষা করা হতে পারে যেমন লিভারের রোগ নির্ণয়ের জন্য এসজিপিটি/এএলটি (SGPT/ALT) কিডনির রোগ নির্ণয়ের জন্য সিরাম ক্রিয়েটিনিন এইচবিএ১সি (HbA1C) এবং রক্ত জমাট বাঁধার ব্লিডিং টাইম ক্লটিং টাইম ও প্রোথ্রমবিন টাইম পরীক্ষা রক্ত পরীক্ষা করার আগেরক্ত পরীক্ষার আগে কিছু প্রস্তুতি নিতে হয় যেমন—যদি ওজিটিটি আপনার রক্ত পরীক্ষার অংশ হয়ে থাকে তাহলে অবশ্যই পরীক্ষার জন্য রক্ত দেওয়ার আগে ৮–১৪ ঘণ্টা আপনাকে খালি পেটে থাকতে হবে পানি ছাড়া অন্য কোনো খাবার বা পানীয় এই সময়ে খাওয়া যাবে না এর কারণ হলো এই পরীক্ষার একটি অংশে খালি পেটে আপনার রক্তে সুগারের মাত্রা দেখা হয় যদি আপনি অ্যাসপিরিন অথবা রক্ত পাতলা করার কোনো ঔষধ খেয়ে থাকেন তবে রক্ত সংগ্রহের আগে সেটা স্বাস্থ্যকর্মীকে জানাবেন সুঁই ঢুকিয়ে রক্ত সংগ্রহের পর বেশিক্ষণ যাবত রক্তক্ষরণ হয় কি না সেদিকে তিনি নজর রাখতে পারবেন প্রচুর পরিমাণ পানি পান করবেন এটি আপনার রক্তের পরিমাণ বাড়াতে এবং আপনার শিরাউপশিরা স্পষ্ট করতে সাহায্য করতে পারে ফলে সহজেই রক্ত সংগ্রহ করা সম্ভব হতে পারে ঢিলে হাতা বা ছোটো হাতার পোশাক পরে যাবেন আপনি বোরখা পরলে হাতা সহজেই কনুইয়ের ওপর পর্যন্ত ওঠানো যায় এমন বোরখা পরে যাবেন এতে রক্ত সংগ্রহ করা সহজ হবে এবং অযাচিত ঝামেলা এড়ানো সহজ হবে রক্ত দেওয়া অথবা শরীরে সুঁই ফুটানো নিয়ে কোনো ভীতি থাকলে পরিবারের কোনো সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে যান লম্বা লম্বা শ্বাস নিয়ে নিজেকে শান্ত রাখার চেষ্টা করুন রক্ত সংগ্রহের সময় সুঁইয়ের দিকে না তাকানোর চেষ্টা করতে পারেনরক্ত পরীক্ষার মূল প্রক্রিয়ারক্ত পরীক্ষায় সাধারণত হাতের শিরা থেকে রক্ত সংগ্রহ করা হয়প্রথমে আপনার হাতের ওপরের অংশে দড়ির মতো একটি টার্নিকেট শক্ত করে বাঁধা হবে এর ফলে টার্নিকেটের নিচের শিরায় রক্ত প্রবাহ সাময়িকভাবে বাধা পাবে এবং শিরাগুলো ফুলে স্পষ্ট হয়ে উঠবে শিরা স্পষ্ট হলে সেখান থেকে সহজে ও সঠিকভাবে রক্ত সংগ্রহ করা যাবে এবার যেই অংশে সুঁই ঢুকানো হবে সেই অংশ অ্যান্টিসেপটিক দিয়ে পরিষ্কার করে নেওয়া হবে তারপর সিরিঞ্জের সাথে সংযুক্ত একটি সুঁই অথবা বাটারফ্লাই সুঁই ত্বকের ভেতর দিয়ে শিরায় ঢুকিয়ে রক্ত নেওয়া হবে এসময়ে আপনি সামান্য খোঁচা অনুভব করতে পারেন তবে খুব বেশি ব্যথা হওয়ার কথা না রক্ত সংগ্রহ করা হয়ে গেলে টার্নিকেট খুলে দেওয়া হবে এরপর এক টুকরা জীবাণুমুক্ত তুলা দিয়ে সুঁই ফুটানোর স্থানটি চেপে ধরে রাখতে হবে কয়েক মিনিট তারপর এর ওপর একটি সার্জিক্যাল টেপ অথবা ব্যান্ডএইড বসিয়ে দেওয়া হবেরক্ত সংগ্রহের পররক্ত সংগ্রহের পর রক্তপাত সাধারণত কয়েক মিনিটের মধ্যেই বন্ধ হয়ে যায় কয়েক ঘণ্টা পর ব্যান্ডএইড বা তুলা নিজে নিজেই সরিয়ে ফেলতে পারেনরক্ত পরীক্ষার জন্য রক্ত দেওয়ার পর সাধারণত রোগীদের কোনো সমস্যা হয় না তবে কারও কারও মাথা ঘুরাতে পারে যদি আগে কখনো রক্ত পরীক্ষার পর আপনার মাথা ঘুরে থাকে তা আগেই রক্ত সংগ্রহকারী স্বাস্থ্যকর্মীকে জানিয়ে দিন তিনি আপনাকে আশ্বস্ত থাকতে সাহায্য করতে পারেন রক্ত দিতে যাওয়ার সময়ে সাথে পানির বোতল রাখতে পারেন পরীক্ষার পর পানি পান করলে আপনি ভালো অনুভব করতে পারেনএ ছাড়া সুঁই ঢুকানোর পর সেই স্থানে সামান্য ক্ষত হতে পারে জায়গাটি নীলচে এবং আশেপাশে সামান্য লালচে আভা থাকতে পারে এটি দুয়েকদিনের মাঝে নিজেই মিলিয়ে যাবে রক্ত পরীক্ষার একেক উপাদানের ফলাফল আসতে একেক রকম সময় লাগে যেমন সিবিসি টেস্টের ফলাফল ১ দিনের মধ্যেই তৈরি হয়ে যেতে পারে আবার টিএসএইচ এর ফলাফল তৈরি হতে ১ সপ্তাহ সময় লাগতে পারে সিফিলিসের পরীক্ষার ফলাফল পেতে ১–২ সপ্তাহ সময় লেগে যায়বিপত্তি এড়াতে রক্ত পরীক্ষার পর রিপোর্ট সংগ্রহ করতে কবে কখন ও হাসপাতালের কোন বিভাগে যেতে হবে তা পরীক্ষা শেষেই কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে জেনে নিন রক্ত পরীক্ষার বিভিন্ন উপাদানের খরচ বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে যখন যেই উপাদান পরীক্ষা করাতে হবে সেগুলোর খরচ যোগ করে আপনার মোট খরচের বিলটি তৈরি করা হবে খরচ কেমন হতে পারে তার ধারণার পাওয়ার জন্য পরীক্ষাগুলোর আনুমানিক খরচ এখানে তুলে ধরা হয়েছে—পরীক্ষার নাম খরচ সিবিসি (ইএসআর সহ) ৩৫০–৫০০ টাকা রক্তের গ্রুপিং ৫০–২৫০ টাকা ওজিটিটি ১০০–৩৫০ টাকা এইচবিএসএজি ৪০০–৮০০ টাকা ভিডিআরএল ১০০–৩০০ টাকা টিএসএইচ ৫০০–৭০০ টাকাউল্লেখ্য হাসপাতালভেদে খরচ অন্যরকম হতে পারে সরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ও হাসপাতালে এবং বিভিন্ন এনজিওতে (যেমন সূর্যের হাসি ক্লিনিক) তুলনামূলকভাবে খরচ কম হয় বেসরকারি হাসপাতাল ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারভেদে প্রতিটি পরীক্ষার খরচ বেশি হতে পারে রক্ত পরীক্ষা খুবই নিরাপদ একটি পরীক্ষা শুধু গর্ভাবস্থাতেই নয় সাধারণ সময়েও বিভিন্ন কারণে রক্ত পরীক্ষা করা হয়ে থাকে সাধারণত রক্ত পরীক্ষার পর কারোরই তেমন কোনো সমস্যা হয় না তবে সামান্য কিছু ক্ষেত্রে কিছু জটিলতা দেখা দিতে পারে যেমন—সুঁই ফুটানোর স্থানে ব্যথা মাথা ঘুরানো অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ সুঁই ফুটানোর স্থানে ইনফেকশন এলার্জি বিরল ক্ষেত্রে সুঁই সিরিঞ্জ বা ল্যান্সেটের মাধ্যমে ভাইরাসের সংক্রমণ—এটি প্রতিরোধ করার উদ্দেশ্যে সবসময় স্টেরাইল সুঁইসিরিঞ্জের ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে রক্ত সংগ্রহ করার পদ্ধতি যথাসম্ভব জীবাণুমুক্ত রাখতে হবেরক্ত পরীক্ষা থেকে যেসব তথ্য সংগ্রহ করা হয় তা আপনার ও আপনার সন্তানের সুস্থতা নিশ্চিত করতে খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে তাই যথাসময়ে এসব পরীক্ষা করে ফেলাই ভালো যৌনাঙ্গের আঁচিল অথবা জরুল খুবই সাধারণ একটি যৌন সংসর্গিত সংক্রমণ যা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাসের (এইচপিভি) কারণে হয় অন্যান্য উপর্গের মধ্যে ব্যথা অস্বস্তি এবং চুলকানি হল এর অন্যতম বৈশিষ্ট পুরুষ ওমহিলাদের যৌনাঙ্গ অঞ্চলের কাছাকাছি একটি বা একগুচ্ছ আঁচিল দেখা দিতে পারে পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের এই সংক্রমণের কবলে পড়ার ঝুঁকি বেশি যৌনাঙ্গের আঁচিল বিভিন্ন রূপে দেখা দিতে পারে যৌনাঙ্গে আঁচিলের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণগুলি হলছোটো বিক্ষিপ্ত ফোলা ( চামড়ার রঙে অথবা গাঢ় বর্ণ)যৌনাঙ্গে একগুচ্ছ ফোলা অংশকুঁচকির জায়গায় চুলকানি অথবা অস্বস্তিযৌন মিলনের সময় রক্তপাত ও তার পর ব্যথাযৌনাঙ্গের আঁচিল যেসব জায়গায় দেখা দেয়মহিলাদের ক্ষেত্রেযোনির ভিতরেযোনিদ্বার জরায়ু গ্রীবা অথবা কুঁচকিতে পুরুষদের ক্ষেত্রেলিঙ্গেঅন্ডথলি উরু অথবা কুঁচকিতেউভয় লিঙ্গের ক্ষেত্রেইমলদ্বারের চারপাশেঠোঁট মুখ জিভ অথবা গলায় যৌনাঙ্গের আঁচিলের মূল কারণ এইচপিভি সংক্রমণ এই সংক্রমণ এইচপিভি সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে সুস্থ ব্যক্তির দেহে ছড়িয়ে পড়ে যেসকল উপায়েযৌনসঙ্গম (যোনি মুখ অথবা পায়ু দ্বারা) এইচপিভি দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় খুব অল্প বয়সে যৌন ক্রিয়ায় সক্রিয় হয়ে উঠলে অথবা একাধিক সঙ্গী বা সঙ্গীনীর সঙ্গে অসুরক্ষিত যৌন সংসর্গ বা এমন কারওর সাথে যৌন মিলন লিপ্ত হওয়া যার যৌনসঙ্গম সংক্রান্ত ইতিহাস জানা নেইপ্রসব (সংক্রামিত মায়ের থেকে শিশুর দেহে সংক্রামিত হয়) চর্মরোগ বিশেষজ্ঞ আংশিকভাবে এই রোগ নির্ণয় করেন শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে যার নির্ধারণে পুরো আঁচিলটি বা তার কিছুটা অংশ ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয় অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নিচে নীচে পরীক্ষার জন্যচর্মরোগ বিশেষজ্ঞ নিম্নলিখিত উপসর্গগুলির পরামর্শ দিতে পারেন পোডোফাইলোটক্সিন (আঁচিলের কোষের বৃদ্ধির রোধ করতে)ইমিকুইমড (এইচপিভির বিরুদ্ধে লড়াইর জন্য শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে)কখনও সখনও কিছু পদ্ধতির অবলম্বন করা হয় এগুলি হলক্রায়োসার্জারি (তরল নাইট্রোজেন) যার দ্বারা আঁচিলকে জমিয়ে দেওয়া হয়কেটে ফেলা অথবা অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাদ দেওয়াইলেক্ট্রোকটারি (বিদ্যুৎ প্রবাহ) আঁচিল বিনষ্ট করে দেয়লেজার ট্রিটমেন্ট (লেজার লাইট) আঁচিল নষ্ট করে দেয়যৌনাঙ্গের আঁচিলের চিকিৎসার সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কারণ হলো এইচপিভি সংক্রমণ যার থেকে সার্ভিকাল এবং যোনির ক্যান্সার হয় এইচপিভি প্রতিকারে টীকাকরণ আঁচিলের পাশাপাশি ক্যান্সারের ঝুঁকি কম কমাতে সহায়ক বেশির ভাগ ক্ষেত্রে গর্ভপাত পদ্ধতি নিরাপদ কিন্তু এটার সাথে সাধারণতঃ কিছু পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া যেমন প্রচণ্ড রক্তপাত শ্রোণীদেশগত (পেলভিক) খিঁচুনি বমি বমিভাব এবং বমি সহগামী হয় যাই হোক যদি আপনি অত্যধিক রক্তক্ষয় জ্বর এবং চূড়ান্ত ব্যথার মত অধিকতর গম্ভীর উপসর্গগুলো লক্ষ্য করেন আপনি অবশ্যই আপনার স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞকে অবিলম্বে জানাবেন গর্ভপাত মহিলাদের ভবিষ্যৎ গর্ভধারণ বা উর্বরতায় প্রভাব ফেলে না এবং সেজন্য যতক্ষণ পর্যন্ত এটা একজন প্রশিক্ষিত স্ত্রীরোগবিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে সম্পাদিত হচ্ছে এটা বেছে নেওয়া মোটেই অনিরাপদ বিকল্প নয় যোনিপথ থেকে অস্বাভাবিক রক্তস্রাবকে উপেক্ষা করা উচিত নয় এবং একজন ডাক্তারকে জানানো উচিত কারণ এটা কোনও গুরুতর অন্তর্নিহিত চিকিৎসাগত অবস্থার ইঙ্গিত দিতে পারে কোনও অস্বাভাবিক যোনিগত রক্তস্রাবের সময়মত রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসা মহিলাটির জননতন্ত্রীয় এবং সেই সাথে সাধারণ স্বাস্থ্যের পক্ষে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যোনিগত রক্তস্রাবের চিকিৎসা এর অন্তর্নিহিত কারণের উপর নির্ভর করে এবং এর মধ্যে ঔষধ হরমোন চিকিৎসা এবং যদি প্রয়োজন হয় কোনও অস্ত্রোপচারও সামিল হতে পারে যোনিগত রক্তস্রাবের কারণগুলিকে সাধারণভাবে জননতন্ত্রীয় আয়াট্রোজেনিক (মেডিক্যাল চিকিৎসার কারণে) এবং পদ্ধতিগত হিসাবে শ্রেণীভুক্ত করা যেতে পারে বিভিন্ন বয়সের কোঠার মহিলাদের ক্ষেত্রে যোনিগত রক্তস্রাবের কারণ নীচেও ব্যখ্যা করা হয়েছে রোটা ভাইরাস এক প্রকারের ছোঁয়াচে ভাইরাস যা খাদ্যনালীতে সংক্রমণ ঘটায় এবং এর ফলে বমি এবং পেট খারাপ হয় এই অবস্থা ছোট বাচ্চা এবং শিশুদের মধ্যে খুবই সাধারণ যদিও প্রতিষেধক এবং ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার মাধ্যমে এই রোগ প্রতিরোধ করা সম্ভব এই ভাইরাসের সংক্রমণ বাচ্চাদের মধ্যে পেট খারাপ হওয়ার একটা খুব সাধারণ কারণ দূষিত জল বা খাদ্য গ্রহণ করার প্রায় দুই দিন বাদে বাচ্চাদের মধ্যে রোটাভাইরাসের লক্ষণগুলি প্রকট হয় লক্ষণগুলি হলো জ্বরপেট খারাপবমিপেটে ব্যাথাখিদে কমে যাওয়াডিহাইড্রেশনমূত্রের পরিমাণ কমে যাওয়ামুখ এবিং গলা শুকিয়ে যাওয়া মাথা ঘোরাঅস্বস্তি বোধ হওয়া বা বিরক্তিভাবযে সব বাচ্চাদের এই লক্ষণগুলির ইতিহাস আছে তারাও রোটা ভাইরাসে আক্রান্ত হতে পারে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা না থাকার জন্য যদিও এই ভাইরাসে প্রথম আক্রান্ত হলে সেই সংক্রমণ অনেক বেশি গুরুতর রোটাভাইরাস খুবই ছোঁয়াচে রোগ যা নিচে উল্লেখ করা মধ্যমে ছড়ায়আক্রান্ত কোনও বাচ্চার মলের সঙ্গে সরাসরি সংস্পর্শআক্রান্ত ব্যক্তির সংস্পর্শে গেলেপ্রসাধন দ্রব্যাদী বিছানা খাদ্য থেকেপরিচ্ছন্নতা না বজায় রাখলে এর গুরুতর পর্যায়ে রোটাভাইরাস থেকে ডিহাইড্রেশন সম্পর্কিত জটিলতার সৃষ্টি করে মানুষের মলে অবস্থিত ভাইরাসের চিহ্নিতকরণের মাধ্যমে এই রোগ নির্ণয় করা হয় রোগ নির্ণয় করার জন্য চিকিৎসক মল পরীক্ষার পরামর্শ দিতে পারেন রোগ সম্পর্কে নিশ্চিত হতে পরবর্তীকালে এনজাইম ইমিউনো ইমিউনোঅ্যাসে এবং রিসার্ভ ট্রান্সক্রিপটেজ পলিমারেজ চেনরিঅ্যাকশন (পিসিআর) রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করতে পারে রোটাভাইরাস সংক্রমণের ক্ষেত্রে প্রতিকারের চেয়ে প্রতিরোধ ভাল অতএব জনবহুল জায়গা পরিত্যাগ করার এবং নিজেকে পরিচ্ছন্ন রাখার উপদেশ দেওয়া হয় সংক্রমণ এড়াতে আক্রান্ত রোগীর বিছানা বা জামাকাপড় না ছোঁয়াই ভালো শরীর থেকে বেড়িয়ে যাওয়া লবন এবং জলের ঘাটতি পূরণ করতে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশনের ব্যবহার করুন যেমন বাড়িতে তৈরি করা লেমোনেড ঘোল নারকেল জল চিনির দ্রবন (এক লিটার ফুটন্ত জলে ৬ চা চামচ চিনি এবং অর্ধেক চা চামচ আয়োডাইজড লবন দিয়ে বানানো) সম্পূর্ণ সুস্থ হওয়া পর্যন্ত বাইরের খাদ্য এড়িয়ে চলাই ভালোরোটা ভাইরাসে সংক্রমণের চিকিৎসা তার লক্ষণের উপর নির্ভর করে হয় এবং এক্ষেত্রে চিকিৎসক সম্পূর্ণ বিশ্রাম নেওয়ার পরামর্শ দিতে পারেন নিজেকে হাইড্রেটেড রাখা এবং কাঁচা খাদ্য এড়িয়ে চলাই ভালোভাইরাসের বিরুদ্ধে সর্বোত্তম সুরক্ষা পেতে শিশুদের দুটি টিকা দেওয়া যেতে পারেরোটা টেক্স (আরভি5) যা বাচ্চাকে 24 এবং 6মাসে দেওয়া হয়রোটারিক্স (আরভি1) ২ এবং 4 মাসের বাচ্চাদের জন্য রোজাসিয়া বা অ্যাকনে রোজাসিয়া এক ধরনের ত্বকের রোগ যা সাধারণত ত্বকের চামড়াকে প্রভাবিত করে মুখকে স্থায়ীভাবে লাল করার জন্য ক্যাপিলারিগুলি (সূক্ষ্ম নল) বড় হয় অনুরূপভাবে কপাল গাল এবং থুতনিতে ব্রণর মতো হলুদ রঙের পিম্পেল বা ফুস্কুড়ি দেখা যায় অনেক সময় একে ব্রণর সাথে গুলিয়ে ফেলা হতে পারে যদিও এটা উল্লেখ করা জরুরী যে ব্রণর মতো রোজাসিয়ার জন্য মুখে কোনও দাগ হয় নাসাধারণত 3050 বছর বয়সী মহিলাদের মধ্যে এই অবস্থাটি হয়ে থাকে যার কারণে মুখ লাল হয়ে যায় অবস্থার অগ্রগতির সঙ্গে সঙ্গে মুখের লালভাব বৃদ্ধি পেতে থাকে যেহেতু ক্যাপিলারিগুলি বড় হয় পুরুষদের ক্ষেত্রে এর ফলে নাকও লাল হয়ে যায় মুখ লাল হয়ে যাওয়া দেখেই সাধারণত এই রোগের নির্ণয় করা হয় কোনও কোনও ক্ষেত্রে চোখও প্রভাবিত হয় এবং রক্তরাঙা ও বালি বালি হয়ে যায় অন্যান্য উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছেকপাল গাল এবং থুতনি লাল হয়ে যাওয়া ফ্লাশিং হঠাৎ পুঁজ ভর্তি ফুস্কুড়ি হওয়া ফর্সা মহিলাদের ক্ষেত্রে রক্ত ধমনীগুলি দৃশ্যমান হওয়া খড়খড়ে এবং ত্বকের রঙ অসম হওয়া রাইনোফাইমা বা নাকের চামড়া মোটা হয়ে যাওয়া মুখ জ্বালা করা মুখে দাগ হওয়া এই রোগটি সাধারণত মুখের উপরে হয় যা মাইটের ফলে হতে পারে এই রোগ হওয়ার অন্যান্য সাম্ভাব্য কারণগুলি হলরক্ত ধমনীর অস্বাভাবিকতাক্যাফিনযুক্ত পানীয় বা গরম পানীয় যেমন কফি বা স্যুপ ইউভি রে এক্সপোজার মানসিক চাপ রেড ওয়াইন বা অন্যান্য মদ অতিরিক্ত গরম অতিরিক্ত পরিশ্রম ওষুধ শারীরিক পরীক্ষা এবং সম্পূর্ণ মেডিকেল ইতিহাস নেওয়ার মাধ্যমে রোজাসিয়ার নির্ণয় করা হয় রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে লুপাস এরিথেমাটোসাসের মতো একই লক্ষণযুক্ত রোগের থেকে রোজাসিয়াকে আলাদা করে চিহ্নিত করা হয় তাই চিকিৎসকের কাছে গেলে এই রোগের অন্তর্নিহিত কারণ চিহ্নিত করা আরও সহজ হতে পারেতবে সাধারণ মানুষ ব্রণ সেবোরিক ডার্মাটাইটিস এবং পেরিওরাল ডার্মাটাইটিসের উপসর্গগুলির সঙ্গে এই রোগের উপসর্গগুলিকে গুলিয়ে ফেলতে পারেএই রোগের চিকিৎসাগুলির মধ্যে রয়েছেঅন্তর্নিহিত কারণগুলি এড়িয়ে চলা নিয়মিত মুখ পরিষ্কার করা সান্সক্রিন লোশনের ব্যবহার ফোটোথেরাপি ডক্সিসাইক্লিন এবং মাইনোসাইক্লিনের মতো অ্যান্টিবায়োটিক ক্রিম এবং লোশনের মাধ্যমে টপিক্যাল চিকিৎসা ডায়াথার্মি লেজার চিকিৎসা আইসোট্রেটিনয়েনের প্রয়োগ সার্জারি বা অস্ত্রোপচার চোখ লাল হওয়া হল একটি উপসর্গ যাতে বোঝা যায় যে চোখে কোন সমস্যা হয়েছে যা সাধারণত ছোট কোন সমস্যাই হয়ে থাকে যাইহোক কখনো কখনো এর সাথে ব্যথা দেখা দিতে পারে এবং যা বড় কোন সমস্যার সংকেত হতে পারে এটি কনজাঙ্কটিভাইটিস নামক সংক্রমণের ফলে চোখ ফুলে যাওয়া/প্রদাহের কারণে হতে পারে আবার চোখের ভিতরে রক্তপাত হলে হতে পারে যাকে সাবকনজাঙ্কটিভাল হ্যামারেজ বলা হয় চোখ লাল হওয়ার সাথে যুক্ত প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছেব্যথা চোখে ফোলাভাব চোখে চুলকানি কখনো কখনো চোখ থেকে জলও পড়ে প্রচন্ড মাথাব্যথা আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা গুরুতর ক্ষেত্রে চোখে দেখতেও সমস্যা হতে পারে চোখ লাল হওয়ার কারণগুলির মধ্যে রয়েছেচোখের মধ্যে বাইরের পদার্থ প্রবেশ করা অ্যালার্জি বা ইমিউনোলজিক প্রতিক্রিয়া তীক্ষ্ণ বা ভোঁতা কিছুর আঘাত লাগা রাসায়নিকে পোড়া চোখের ভিতরে রক্তবাহগুলির ফেটে যাওয়া ভাইরাসঘটিত সংক্রমণ অথবা ব্যাকটেরিয়াঘটিত সংক্রমণ বিভিন্ন সমস্যাগুলি যেমন কনজাঙ্কটিভাইটিস ক্যালেজিয়ন এবং ক্যারাটাইটিস গ্লুকোমা ইউভিয়াইটিস এবং কর্নিয়াল আলসারের ক্ষেত্রে যন্ত্রণাদায়ক লাল চোখ দেখা যায় অ্যাস্পিরিন অথবা ওয়ারফেরিনের মতো ওষুধগুলিরক্তপাত যেমন সাবকনজাঙ্কটিভাল হ্যামারেজের ক্ষেত্রে যেটি হল একটি চিকিৎসাগত জরুরি অবস্থা ডাক্তার উপসর্গগুলির সম্পূর্ণ ইতিহাস নিয়ে থাকেন যার মধ্যে রয়েছে কতক্ষণ চোখ লাল থাকে এবং কতটা লাল থাকে এবং কোন ব্যথা আছে কিনা বা থাকলেও কতটা ব্যথা আছে ডাক্তার তারপর চোখের সম্পূর্ণ পরীক্ষা করেন এইগুলি জানার জন্য দৃষ্টিশক্তি চোখের বাইরের পেশীর সঞ্চালণের ক্ষমতা চোখের ভিতরের চাপ স্লিটল্যাম্প টেস্ট কর্নিয়ায় আঁচড়ের দাগ ঘর্ষণ অথবা এডিমা/ফোলাভাব আছে কিনা চোখের পাতা এবং অশ্রুথলিগুলির পরীক্ষাচোখ লাল হওয়ার সমস্যায় ব্যবস্থা নেওয়া পুরোপুরি এর কারণের উপর নির্ভর করে এবং যার মধ্যে থাকতে পারেবাড়িতে নেওয়ার ব্যবস্থাগুলি যেমনঠান্ডা সেঁক অথবা বন্ধ চোখের উপর দিনে কয়েকবার ধোয়া কাপড় ব্যবহার করা চোখে হাত দেওয়ার আগে হাত পরিষ্কার করা এবং প্রতিদিন পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন বিছানা এবং তোয়ালে ব্যবহার করা অ্যালার্জির কারণস্বরূপ অনুঘটকগুলি অথবা অস্বস্তি সৃষ্টিকারী পদার্থগুলি থেকে দূরে থাকা যদি চোখে কোন বাইরের পদার্থ প্রবেশ করে থাকে তা বার করে দেওয়া ওষুধ দ্বারা সমস্যাটির সমাধানের উপায়গুলির মধ্যে রয়েছেসংক্রমণ হলে অপথ্যালমিক অ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার অ্যালার্জির জন্য অ্যান্টিহিস্টামাইন/ভেসোকনস্ট্রিকটর ওষুধের ব্যবহার শুষ্ক চোখের জন্য প্রদাহনাশক ওষুধ কৃত্রিম চোখের জল এবং পিচ্ছিলকারক মলমের ব্যবহার গ্লুকোমার ক্ষেত্রে রক্তচাপ কমানোর ওষুধের ব্যবহার গুরুতর ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয় সাইকোসিস হল একটি অত্যন্ত গুরুতর মানসিক অসুস্থতা যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি হ্যালুসিনেশন (দৃষ্টিভ্রম) বা ডিলিউসনে (বিভ্রম) ভোগেন এবং বাস্তব জগতের সঙ্গে যোগসূত্র হারিয়ে ফেলেন এটি একটি কঠিন সমস্যা যার দ্রুত চিকিৎসা হওয়ার প্রয়োজন কারণ সাইকোসিসের রোগীরা নিজের ও আশেপাশের মানুষদের জন্য বিপদ সৃষ্টি করতে পারেন সাইকোসিসের অনেক নির্ধারক লক্ষণ এবং উপসর্গ আছে তার মধ্যে কিছু হলঘুমের অভাব অথবা অতিরিক্ত ঘুম (নিদ্রা চক্রের ব্যাঘাত) অবসাদ বা বিষণ্নতা উদ্বেগ দৃষ্টিভ্রম বিভ্রম মনযোগের সমস্যা পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে দূরত্ব সৃষ্টি আত্মহত্যার চিন্তাভাবনা অথবা প্রচেষ্টা সাধারণত বংশে মানসিক সমস্যার ইতিহাস আছে এমন মানুষের সাইকোসিস ঘটার সম্ভাবনা বেশি কয়েকটি ক্রোমোজোমের রোগের ফলেও সাইকোসিস হতে পারে অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলি হল মাদক সেবন ঝঞ্ঝাটপূর্ণ এবং অবসাদগ্রস্থ পরিবেশ মস্তিষ্কের টিউমার পার্কিনসন্স বা হান্টিংটন্স রোগের মত মস্তিষ্কের রোগগুলি বাইপোলার ব্যাধি ডিলিউসনাল ব্যাধি সাইকোটিক ডিপ্রেশন স্কিজোফ্রেনিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির পর্যবেক্ষণ ও উদ্দীপকের প্রতি তার প্রতিক্রিয়ার উপর যেকোন রকম সাইকোটিক বা মনোরোগের ব্যাধির নির্ণয়করণ নির্ভর করে চিকিৎসক রোগীকে অবস্থাটির পরবর্তী সাহায্য ও মূল্যায়নের জন্য মনোচিকিৎসকের কাছে পাঠাতে পারেনএই সমস্যায় আক্রান্ত ব্যক্তিকে অ্যান্টিসাইকোটিক প্রকৃতির ওষুধ দেওয়া হয় যা দৃষ্টিভ্রম ও বিভ্রম কমাতে এবং বাস্তব জগৎ ও অবাস্তবের মধ্যে নিশ্চিত পার্থক্য বোঝাতে সাহায্য করেকাউন্সেলিং ও সাইকোথেরাপির পরামর্শও দেওয়া হয়ে থাকে এবং এইরকম সমস্যায় এগুলি সাহায্য করে বিশেষত বাইপোলার ও সাইকোটিক অসুস্থতায় যেখানে একজন কাউন্সেলরের সাথে নিয়মিত সাক্ষাৎ রোগীকে স্বাচ্ছন্দ্য এবং বাস্তবের সঙ্গে যুক্ত থাকার অনুভূতি দেয়সাইকোসিসের সঙ্গে লড়াই একটি কঠিন প্রক্রিয়া এর জন্য প্রয়োজন দৃঢ়সংকল্প মনোভাব এবং আক্রান্ত ব্যক্তিকে একটানা সাহায্য ও সহায়তা প্রদানের জন্য পরিবারের সদস্যদের থেকে সহযোগিতা কারণ এইরকম পরিস্থিতিতে সাধারণত রোগী ও তার পরিবারের সদস্যদের মধ্যে দূরত্বের সৃষ্টি হয় দুর্বল স্মৃতিশক্তি হলো তথ্য সঞ্চয় এবং তা মনে করার ক্ষেত্রে অসুবিধার সম্মুখীন হওয়া চাবি রাখার স্থান অথবা বিল জমা দেওয়া হয়েছে না হয়নি এক লহমায় তা ভুলে যাওয়া স্বাভাবিক ব্যাপার এক্ষেত্রে কোনও ব্যক্তিরই সারাজীবন নিখুঁত স্মৃতিশক্তি স্থায়ী হয় না বার্ধক্যজনিত স্মৃতিশক্তি লোপের ঘটনা সাধারণ ব্যাপার তবে আপনি যদি গাড়ি চালানো যেখানে সারাজীবন ধরে রয়েছেন বাড়ি ফেরার সেই রাস্তার মতো ইত্যাদি তথ্য ভুলে যান তাহলে এই স্মৃতিশক্তি হ্রাস অন্তর্নিহিত অসুস্থতার ইঙ্গিতবাহক এক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসা প্রদানকারীর পরামর্শ নেওয়া উচিত বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে স্মৃতিশক্তির দুর্বলতা সাধারণ ঘটনা তবে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি স্থায়ী অন্তর্নিহিত কগনিটিভ রোগের অবস্থার নির্দেশ দেয় একই প্রশ্ন বারবার জিজ্ঞাসা করা নির্দেশ অনুসরণে অসুবিধা চেনা লোকজন ও জায়গার সম্পর্কে বিভ্রান্তি একটি পরিচিত জায়গার দিক ভুলে যাওয়া সাধারণ কথোপকথনে অসুবিধা জরুরি মিটিং এবং কাজকর্মে যোগ দিতে ভুলে যাওয়া একই বয়সের অন্যান্য ব্যক্তির তুলনায় বেশি স্মৃতিশক্তি জনিত সমস্যায় পড়া দুর্বল স্মৃতিশক্তির কারণগুলি নিম্নলিখিতবার্ধক্য এটি সাধারণ ব্যাপার আলজাইমার রোগ এবং অন্যান্য ধরনের স্মৃতিভ্রংশ স্ট্রোক বমস্তিষ্কে টিউমার মানসিক অবসাদ মস্তিষ্কে আঘাত উদ্বিগ্নতা কমানো অবসাদরোধী খিঁচুনিনাশক কোলেস্টেরল কমানোর মতো অন্যান্য নির্দিষ্ট ওষুধপত্র দুর্বল স্মৃতিশক্তির কারণগুলি সনাক্ত করার সঙ্গে এর রোগ নির্ণয় যুক্ত নিম্নলিখিত উপায়গুলি স্বীকৃতি পদ্ধতিচিকিৎসাজনিত ইতিহাস শারীরিক পরীক্ষা ল্যাবোরেটরি টেস্ট সাইক্রিয়াটিক এভলিউশন টেস্টের সাহায্যে চিন্তাভাবনার পরিবর্তন চিহ্নিত করা মস্তিষ্কের এক্সরে সিটি স্ক্যান এবং এমআরআইস্মৃতিশক্তি দুর্বলতার কারণ বার্ধক্য নাকি কোনও রোগ এই পরীক্ষাগুলি সেই সিদ্ধান্তে আসতে সাহায্য করেচিকিৎসা পুরোপুরি স্মৃতিশক্তি দুর্বলতার কারণগুলির ওপর নির্ভর করে হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্মৃতিভ্রংশের কোনও প্রতিকার নেই এবং ডোনেপেজিল রিভাস্টিগমাইন মেমান্টাইন ও গ্যালান্টামাইনের মতো ওষুধগুলি সাময়িকভাবে উপসর্গগুলি থেকে স্বস্তি পাওয়ার জন্য দেওয়া হয়চিন্তাভাবনার সক্ষমতাকে উদ্দীপ্ত করে এমন ওষুধবিহীন থেরাপিও কার্যকরী ভূমিকা নেয় এইধরনের থেরাপিগুলি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দলভিত্তিক থেরাপি এবং ব্রেনটিজার গেম সংক্রান্ত প্রকৃত বিপদের উপস্থিতি ছাড়াই কোন বস্তু বা পরিস্থিতির প্রতি অত্যধিক ভয়কে বলে ফোবিয়া যে বস্তু বা পরিস্থিতির থেকে ভয়ের সৃষ্টি হয় তার সম্পর্কে চিন্তা করলেও উদ্বেগের অনুভূতি হতে পারে গুরুতর পরিস্থিতির ক্ষেত্রে উদ্বেগের অনুভূতি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একটি ঘটনা কিন্তু কোন বাস্তব কারণ বা বিপদ ছাড়াই উদ্বিগ্ন বোধ করা স্বাভাবিক নয় সুতরাং ফোবিয়া মানুষের দৈনন্দিন কার্যকলাপে ক্ষতিকর প্রভাব ফেলতে পারে সাধারণত যে বস্তুগুলির প্রতি ফোবিয়া দেখতে পাওয়া যায় সেগুলি হল পশু কীটপতঙ্গ ইনজেকশন উচ্চতা জনসমক্ষে বক্তব্যপেশ এবং মানুষের ভিড়একটি ভারতীয় গবেষণাপত্র অনুযায়ী ফোবিয়া হল একপ্রকার এংজাইটি ডিসঅর্ডার এবং ভারতীয় জনসংখ্যার 42এর উপরে এর প্রভাব দেখতে পাওয়া যায় ভয় ও উদ্বেগের পাশাপাশি অন্য যে উপসর্গগুলি এতে দেখতে পাওয়া যায় তা নিচে দেওয়া হলমাথা ঘোরা বা মূর্ছা যাওয়ার মত অনুভূতি হৃদস্পন্দনের হার বৃদ্ধি শ্বাস নিতে সমস্যা এবং গেলার সমস্যা ঘাম হওয়া বুকে ব্যথা বমিভাব ও বমি কাঁপুনি অবশতা পারিপার্শ্বিক সম্বন্ধে সচেতনতার অভাবএই উপসর্গগুলির তীব্রতা বিভিন্ন মানুষের ক্ষেত্রে বিভিন্নরকম হয় গুরুতর পরিস্থিতিতে ফোবিয়া থেকে প্যানিক এট্যাক ডিসঅর্ডার জাতীয় অন্যান্য এংজাইটি ডিসঅর্ডারের সৃষ্টি হতে পারে ফোবিয়ার কোন নির্দিষ্ট কারণ এখনো চিহ্নিত করা যায়নি নিম্নলিখিত কারণগুলির ফলে এটি ঘটতে পারেঅতীত পরিস্থিতি (যেমন উড়ান বা জনসমক্ষে বক্তব্য রাখার খারাপ অভিজ্ঞতা লিফটে আটকে যাওয়া ছোটবেলায় কুকুরের কামড় দুর্ঘটনা যার ফলে মৃত্যু হতে পারতো ইত্যাদি)পরিবারের সদস্যদের মধ্যে একই প্রকৃতির ভয়জিনগত কারণচাপের মধ্যে আছেন এরকম মানুষ বা এংজাইটি ডিসঅর্ডারের রোগী যদি কোন বস্তু বা পরিস্থিতি আপনার মধ্যে ফোবিয়া বা অত্যধিক ভয়ের উদ্রেক করে তাহলে প্রথম কর্তব্য হল বিষয়টি নিয়ে কারো সাথে আলোচনা করা সে বন্ধু হতে পারে বা পরিবারের সদস্য দ্বিতীয়ত শান্ত হওয়ার কিছু প্রক্রিয়া (রিল্যাক্সেশন টেকনিক) যেমন যোগব্যায়াম ধ্যান ও শ্বাসক্রিয়ার হার নিয়ন্ত্রণের পদ্ধতির সাহায্যে আপনি দেহকে শান্ত হতে শেখাতে পারেনযদি পেশাদারি সাহায্য চান তাহলে আপনার চিকিৎসকের সাথে কথা বলুন আপনার ভীতি এবং তার তীব্রতা নির্ণয়করণের পরে তিনি আপনাকে চিকিৎসা প্রণালীগুলি জানাবেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে ফোবিয়ার কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় না চিকিৎসা পদ্ধতিগুলো হলকাউন্সেলিং ও থেরাপির মাধ্যমে ধাপে ধাপে ভয়ের উৎসের মুখোমুখি হওয়া এবং সমস্যাটির সম্বন্ধে চিন্তাপ্রক্রিয়ায় পরিবর্তন আনাভয়ের সঙ্গে সম্পর্কিত উদ্বেগের উপশমের ওষুধের ব্যবহারএকই ফোবিয়ায় আক্রান্ত অন্যান্য মানুষদের সাথে গ্রূপ থেরাপিকগনিটিভ বিহেভিয়রাল থেরাপিযোগব্যায়াম ও ধ্যান জাতীয় রিল্যাক্সেশন টেকনিক ইস্ট এক ধরণের ছত্রাক যা শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে বাস করে যেমন ডাইজেস্টিভ ট্র্যাক মুখে চামড়াতে এবং জেনিটালসে লিঙ্গে যখন সাধারণ কমেনসাল ইস্টের অতিবৃদ্ধি হয় তখন পিনাইল ইস্ট সংক্রমণ ঘটে এই সংক্রমণকে ক্যান্ডিডিয়াসিস বলে কারণ ক্যানডিডা আলবিকান্স নামক এক জীব এই সংক্রমণটি ঘটায় ক্যানডিডা সংক্রমণ যে পুরুষদের সুন্নত করা হয়েছে তাদের থেকে যে পুরুষদের সুন্নত করা হয়নি তাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় কারণ লিঙ্গত্বকের নিচের ঘাম এবং উষ্ণতা ইস্টের বৃদ্ধিকে সহজ করে তোলে ৪০ বছর এবং তার বেশি বয়সী পুরুষদের মধ্যে ক্যানডিডা হওয়ার সম্ভাবনা খুব বেশিএই রোগের প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি কিপিনাইল ইস্ট সংক্রমণের ফলে লিঙ্গের নিচের অংশে নিম্নলিখিত উপস্বর্গগুলি দেখা যায় যেমনবেদনাদায়ক ফুসকুড়িস্কেলিং বা খসখসে চামড়ালালভাবলিঙ্গের মাথায় চুলকানিযুক্ত ফুসকুড়ি হলো সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ যা পুরুষরা অনুভব করেএই রোগের প্রধান কারণ কিনিম্নলিখিত কারণগুলির জন্যই ইস্টের অতিবৃদ্ধি হয় এবং সেই কারণেই পিনাইল ইস্ট সংক্রমণ ঘটে যেমনআর্দ্র বা উষ্ণ অবস্থাএকটি দুর্বল ইমিউন সিস্টেমঅ্যান্টিবায়োটিকস( কারণ তারা সুস্থ ব্যাকটেরিয়াকে মারতে পারে যা ইস্টের বৃদ্ধিকে দমন করতে সাহায্য করে)যেসব ব্যক্তির এইচআইভি সংক্রমণ এবং ডায়াবেটিস এর মতন রোগ আছে তাদের মধ্যে ইস্ট সংক্রমণের বিকাশের সম্ভাবনা বেশিসুগন্ধযুক্ত সাবান বা শাওয়ার জেল ব্যবহার করলে ত্বকে চুলকানি হতে পারে এবং ক্যান্ডিডার সংখ্যাবৃদ্ধির ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারেএকজন মহিলা যার যোনিতে ইস্ট সংক্রমণ রয়েছে তার সঙ্গে অসুরক্ষিত যৌনমিলন আপনার চিকিৎসক নিম্নলিখিত পদ্ধতির মাধ্যমে পিনাইল ইস্ট সংক্রমণের নির্ণয় করবেনআপনার চিকিৎসার ইতিহাস এবং উপসর্গগুলি নোট করবেনএকটি শারীরিক পরীক্ষা করবেনলিঙ্গের স্ক্র্যাপিংয়ের (তরল বা টিস্যুর নমুনা) পরীক্ষাপিনাইল ইস্ট সংক্রমণের জন্য উপলব্ধ চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি নিচে দেওয়া হলোঅ্যান্টিফাঙ্গাল ক্রিম বা লোশনওষুধযুক্ত সাপোজিটরিসযেসব ব্যক্তি দুর্বল ইমিউনিটির কারণে সংক্রমণের দ্বারা আক্রান্ত হয় তাদের জন্য মৌখিক অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধএই ওষুধগুলির বেশিরভাগই ওষুধের দোকানে পাওয়া যায় যা প্রেসক্রিপশন ছাড়াই কিনতে পারা যাবেএই সব ওষুধগুলি ব্যবহার করার পরেও যদি সংক্রমণ থেকে যায় তাহলে আপনার ডাক্তার অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ দীর্ঘসময় ধরে ব্যবহার করার পরামর্শ দিতে পারেন পেনাইল ক্যান্সার একটি রোগ যাতে পেনিস বা লিঙ্গের টিস্যুতে ম্যলিগন্যান্ট বা ক্যান্সারযুক্ত কোষগুলির অনিয়ন্ত্রিতভাবে সংখ্যাবৃদ্ধি হয় এটি একটি বিরল ধরণের ক্যান্সার যা চল্লিশোর্ধ্ব পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় সুন্নত বা খৎনা ক্যান্সারের ঝুঁকি কমিয়ে দেয় আর তাই মুসলমান এবং ইহুদি পুরুষদের মধ্যে পেনাইল ক্যান্সার সাধারণ ব্যাপার নয় এর সঙ্গে জড়িত কোষের ওপর ওপর ভিত্তি করে পেনাইল ক্যান্সারকে বিভিন্ন প্রকারে শ্রেণীবদ্ধ করা হয় লিঙ্গের ত্বককে আক্রান্ত করা ক্যান্সারকে লিঙ্গের মেলানোমা বলা হয় লিঙ্গ স্পর্শ করলে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি বা পিণ্ড অনুভব করা পেনাইল ক্যান্সারের প্রাথমিক লক্ষণগুলির মধ্যে একটি অন্যান্য লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে রক্তপাত অথবা অনবরত দুর্গন্ধযুক্ত স্রাবের নির্গমন যা একসঙ্গে অনেক সপ্তাহ চলার পরও সারে না লিঙ্গের মাথায় ফুসকুড়ি লিঙ্গের গায়ে ঘা বা অনিয়মিত ক্ষত অথবা অস্বাভাবিকভাবে লিঙ্গে ব্যথা রোগ যত মাথাচাড়া দেয় এইসব উপসর্গের সঙ্গে স্পষ্ট কারণ ছাড়া ওজন হ্রাস ক্লান্তি এবং প্রস্রাবে সমস্যা দেখা দেয় পেনাইল ক্যান্সার হওয়ার নির্দিষ্ট কারণ পুরোপুরি বোঝা যায়নি তবে এই রোগের প্রবণতা বৃদ্ধি করে এমন কিছু ঝুঁকিপূর্ণ কারণ হলো ধূমপান এবং ফিমোসিস হওয়া এই অবস্থায় লিঙ্গের ফোরস্কিন বা উপরের চামড়া লিঙ্গের মাথায় আটকে যায় আর তাতে লিঙ্গে বারবার সংক্রমণের প্রবণতা সৃষ্টি হয় এবং ক্যান্সারের ঝুঁকি বেড়ে যায় অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে বার্ধক্য লিঙ্গে আঘাত এবং যৌনাঙ্গে জরুল হওয়ার ইতিহাস সাধারণ চিকিৎসকের কাছে চিকিৎসা করানোর পরেও উপরের উল্লেক্ষিত কোনও একটি উপসর্গও যদি না সারে তাহলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির একজন বিশেষজ্ঞ বা ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া উচিত তিনি বিস্তারিতভাবে পরীক্ষা এবং অনুসন্ধান করে দেখবেন প্রাথমিক এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অনুসন্ধানের মধ্যে একটি হল লোকাল বায়োপসি করানো বায়োপসিতে আক্রান্ত অঙ্গ থেকে নমুনা সংগ্রহ করা হয় এবং তা অণুবিক্ষণ যন্ত্রের তলায় পরীক্ষা করা হয় ক্যান্সার কোষ অথবা অন্যান্য রোগের উপস্থিতি জানার জন্য একবার বায়োপসি হয়ে যাওয়ার পর একগোছা স্ক্যান করানো হয় যেমন ক্যান্সারের সঠিক বিস্তার এবং সীমা জানার জন্য পিইটি স্ক্যান বা সিটি স্ক্যানের পরামর্শ দেওয়া হয় এইভাবে লসিকা গ্রন্থির সংযুক্তি বিস্তার এবং সাধারণ টিস্যুর ওপর ক্যান্সারের আক্রমণের প্রবলতার ওপর ভিত্তি করে ক্যান্সারকে স্টেজ বা পর্যায় নির্ধারণ করা হয় স্টেজ ক্যান্সারের সম্পর্কে পূর্বানুমান এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আরোগ্য লাভের সম্ভাবনার স্পষ্ট ধারণা পেতে সাহায্য করেআক্রান্ত অংশের আকার এবং ক্যান্সারের বিস্তারের ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসা নির্ভর করে লিঙ্গের মাথার টিউমারের জন্য এবং তা লিঙ্গত্বকের মধ্যেই সীমিত হয় ওই অংশটি বাদ দিতে লেজার সার্জারি করা হয় তারপর স্কিন গ্রাফ্ট বসানো হয় ক্যান্সারের উচ্চ পর্যায়ে চিকিৎসা পদ্ধতিগুলির মধ্যে রয়েছে কেমোথেরাপি রেডিয়েশন থেরাপি এবং সার্জারি প্যারালাইসিস হল একটা অবস্থা যেখানে শরীরের কিছু বা সমস্ত অঙ্গের সাময়িক বা সম্পূর্ণ সঞ্চালণ বন্ধ হয়ে যায় এটা হয় মস্তিষ্ক এবং শরীরের পেশিসমূহের মধ্যে সংকেতপ্রেরণ পদ্ধতির আদানপ্রদানগত সমস্যার কারণে এটি হতে পারে কোনও রোগের কারণে যেমন পোলিও স্নায়ুর ব্যাধি অথবা অন্য কারণের জন্য মূল উপসর্গ হল শরীরের কিছু অঙ্গ বা শরীরের সমস্ত অঙ্গ নড়াচড়া করার অক্ষমতা এটির সুত্রপাত হয়তো আস্তে আস্তে বা হঠাৎ করে হয় উপসর্গগুলি হয়তো মাঝে মাঝে দেখা দিতে পারে মুখ্যভাবে আক্রান্ত অঙ্গগুলি হলমুখের অংশপায়ের উপরের দিকএকটা পায়ের উপরের বা নীচের দিক (মোনোপ্লেজিয়া)শরীরের একটা দিক (হেমিপ্লেজিয়া)দুটো পায়েরই নীচের দিকে (প্যারাপ্লেজিয়া)চার হাতপা (কোয়াড্রিপ্লেজিয়া)শরীরের সমস্ত আক্রান্ত অঙ্গ কঠিন অথবা আলগা বোধ হতে পারে সেখানে সংবেদনের অভাব দেখা দিতে পারে বা কখনও কখন সেগুলি বেদনাদায়কও হয়ে উঠতে পারে প্যারালাইসিসের অন্তর্নিহিত কারণগুলি অনেক এবং এটা সাময়িক বা দীর্ঘকালের জন্য হতে পারে প্রধান কারণগুলি হলদেহের এক দিকে হঠাৎ করে দুর্বলতা (স্ট্রোক বা অস্থায়ী ইসচেমিক আক্রমণ)অল্পক্ষণের জন্যপ্যারালাইসিস ঘুম থেকে ওঠার পর বা ঘুমোতে যাওয়ার আগে (স্লিপ প্যারালাইসিস)দুর্ঘটনার কারণে স্নায়ুর ক্ষতি হওয়া বা মস্তিষ্কে আঘাত পাওয়ামুখের প্যারালাইসিস (বেলস পালসি) মস্তিষ্কে ক্ষতের কারণেপ্যারালাইসিসের কিছু সাধারণ কারণ হলমস্তিষ্কে আঘাত বা মেরুদণ্ডে আঘাতস্ট্রোকমাল্টিপল স্ক্লেরোসিসপোলিওসেরিব্রাল পালসিমস্তিষ্কে বা মেরুদণ্ডে টিউমার প্যারালাইসিস প্রাথমিকভাবে উপসর্গ দেখে নির্ণয় করা হয় শারীরিক পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে ডাক্তার কি ধরণের প্যারালাইসিস হয়েছে তা নির্ণয় করেন ইমেজিং পদ্ধতি যেমন এমআরআই এবং সিটি স্ক্যান হয়তো করানো হবে মস্তিষ্কের এবং মেরুদণ্ডের বিশদ চিত্র পাওয়ার জন্য এবং স্নায়ুর অবস্থাও পরীক্ষা করে দেখা হয়কোন নির্দিষ্ট ওষুধ দেওয়া হয় না প্যারালাইসিসের চিকিৎসা সাধারণত নির্ভর করে অন্তর্নিহিত কারণের উপর ওষুধের ব্যবহার ছাড়াই যেসকল পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় সেগুলি হলফিজিওথেরাপি যাতে পেশির জোড় বাড়ে এবং পেশির ভর বাড়েচলাচল করার জন্য সাহায্য উইলচেয়ার এবং ব্রেসেস সাহায্য করে রোগীকে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতেকাজের মাধ্যমে থেরাপি দৈনন্দিন কাজগুলির দ্বারা সাহায্যপ্যারালাইসিস হল এমন একটা অবস্থা যা জীবনের মান কমিয়ে দেয় এবং সেই ব্যক্তির আত্ম মর্যাদাও আঘাতপ্রাপ্ত হয় তাই এর জন্য চাই যথাযথ সমর্থন এবং যত্ন মহিলাদের ডিম্বাণু (ওভাম) সৃষ্টিকারক অঙ্গ (ওভারি)এর টিস্যুর ক্যান্সারকে ওভারিয়ান ক্যান্সার বলে ওভারিয়ান টিউমার বিনাইন (ক্যান্সারবিহীন) অথবা ম্যালিগন্যান্ট (ক্যান্সারযুক্ত) হতে পারে গাইনোলজিকাল বা স্ত্রীরোগসম্বন্ধীয় ক্যান্সারের মধ্যে এটি সবচেয়ে বিপজ্জনক এবং সাধারণত বয়স্ক মহিলাদের মধ্যে দেখা যায় ওভারিয়ান বা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সার খুব ধীর গতিতে বিকশিত হয় বলে প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা খুব মুশকিল কিছু সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হলোঅনিয়মিত ঋতুস্রাব অথবা ঋতু প্রবাহ ও চক্রে পরিবর্তন যৌনমিলনের সময় ব্যথা বুকজ্বালা পিঠ ও পেলভিক বা শ্রোণীচক্রে ব্যথা শ্রোণী অঞ্চল ফুলে ওঠা ক্ষুধামান্দ্য ওজন হ্রাস বমিভাব কোষ্ঠকাঠিণ্য পেটফাঁপা শ্বাসকষ্ট ক্লান্তি ঘনঘন প্রস্রাবইরিটেবল বাওয়েল সিনড্রোম (আইবিএস) ওভারিয়ান ক্যান্সারের লক্ষণ ও উপসর্গগুলি অনুকরণ করে বেশিরভাগ ওভারিয়ান ক্যান্সারের প্রকৃত কারণ পরিষ্কারভাবে বোঝা যায় না সাধারণ কিছু বিপজ্জনক কারণ হলোজিনগত পরিবর্তন বংশগতভাবে দেহে আসা (উদাহরণস্বরূপ বিআরসিএ1/2 এইচএনপিসিসি)সন্তান হয়নি এমন মহিলামানসিক চাপবন্ধ্যাত্বের চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াডিম্বাশয় অথবা স্তন ক্যান্সার থাকার পারিবারিক ইতিহাসঅন্যান্য ঝুঁকিপূর্ণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে ধূমপান পশ্চিমী খাদ্যাভাস স্থুলকায় রোগ ডিওড্রেন্ট ব্যবহার ট্যালকম পাউডার ব্যবহার পরিবেশ দূষণ দারিদ্রতা এবং শৈশবস্থা থেকে খারাপ খাদ্যাভাস ওভারিয়ান ক্যান্সারের নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসকেরা বিভিন্ন পদ্ধতি গ্রহণ করেন যেমনতলপেট এবং পেলভিকের আল্ট্রাসাউন্ডডিম্বাশয় সংক্রান্ত কোনওরকম অসুখের ক্ষেত্রে আলট্রাসাউন্ডকে সর্বাধিক প্রাধান্য দেওয়া হয় প্রথম টেস্ট হিসেবেসিটি স্ক্যানবড়ো আকারের টিউমার সনাক্ত করতে ব্যবহৃত হলেও এতে কিন্তু ছোটো আকারের টিউমার ধরা পড়ে নাএমআরআই স্ক্যানএটি মস্তিষ্ক ও মেরুদণ্ডে ক্যান্সার ছড়িয়েছে পড়া সনাক্ত করতে সাহায্য করেরক্তপরীক্ষাসিএ125 পরীক্ষা করা হয় সিএ125 এর মাত্রা জানার জন্য যা ডিম্বাশয়ের ক্যান্সারযুক্ত কোষগুলি উৎপন্ন করেক্যান্সার নির্ণয় হলে এর চিকিৎসা নিম্নলখিত উপায়ে করা হয়কেমোথেরাপিঅপারেশনরেডিয়েশন থেরাপিএছাড়াও আকুপাংচার ভেষজ ওষুধ ধ্যান এবং যোগব্যায়ামের মতো কিছু পরিপূরক চিকিৎসা পদ্ধতি রয়েছে যা প্রচলিত চিকিৎসার সঙ্গেই ব্যবহৃত হয় রিকেট হলো একটি রোগ যা ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের অভাবের কারণে হয় এটি হাড়ের স্বাস্থ্যের উপর ভীষণ বড় প্রভাব ফেলে পাশাপাশি শিশুদের এবং বয়ঃসন্ধিদের মধ্যে বৃদ্ধি এবং বিকাশে এমন কি বয়সকালেও মারাত্মক প্রমাণিত হয়েছে কারণ এটি হাড়কে নরম দুর্বল করে দেয় এবং হাড়ের বৃদ্ধি খুব বেদনাদায়ক হয় এবং এর ফলে অঙ্গবিকৃতিও হয় এই অবস্থাকে শিশুদের মধ্যে হলে রিকেট এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে হলে অষ্টিওমেলাসিয়া বলা হয় প্রাথমিক ক্লিনিক্যাল লক্ষণ এবং উপসর্গের মধ্যে থাকে হাড়ে ব্যাথা কঙ্কাল বিকৃতি দাঁতে সমস্যা হাতের কনুই থেকে কব্জি পর্যন্ত এবং হাঁটুতে কস্টোকোন্ড্রাল জংশনে (যেখানে পাঁজর বুকের সাথে সংযুক্ত থাকে) দুর্বল বৃদ্ধি প্রকাশিত হয় এই জায়গাগুলোতে দ্রুত হাড়ের বৃদ্ধি এবং বিকাশ এবং ভঙ্গুর হাড় দেখা যায় ফন্টানেল্লে (শিশুদের মাথার উপরের নরম অংশ) বন্ধ হতে সময় নেয় এবং সদ্যজাতদের মধ্যে কপালের হাড়ে গোলাকার ফোলা অংশ দেখা যায় একটু বড় শিশুদের মধ্যে কাইফোসিস বা স্কোলিওসিস (মেরুদন্ড সামনের দিকে বা পাশের দিকে বাঁকা থাকে) থাকতে পারেকঙ্কাল সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া অন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছে ব্যাথা জ্বালা অঙ্গ সঞ্চানলে বিলম্ব এবং কম বৃদ্ধি রিকেট রোগ অনেক সময় কঙ্কাল সংক্রান্ত ডিসপ্লেসিয়াসের সাথে ভুল হতে পারে কারণ এদের ক্লিনিক্যাল বৈশিষ্ট্যগুলি একইরকম রিকেট রোগের খুব সাধারণ কারণ হলো ভিটামিন ডি এবং ক্যালসিয়ামের অভাব নিচে উল্লেখ করা এই ঘাটতিগুলি সবচেয়ে সাধারণ কারণপুষ্টির অভাবভিটামিন ডি এর শোষণে অক্ষমতাসূর্যরশ্মিতে ত্বকের অপর্যাপ্ত প্রকাশগর্ভাবস্থাঅকালজাত বা সময়ের আগে হওয়াস্থূলতাকিডনি এবং লিভারে রোগনির্দিষ্ট কিছু অ্যান্টিকনভালস্যান্টস (খিঁচুনির জন্য) বা অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল (এইচআইভির জন্য) ওষুধক্যালসিয়াম এবং ফসফেট ঘাটতির কারণে খনিজকরণের ত্রুটিগুলিকে যথাক্রমে ক্যালসিপেনিক এবং ফসফোপেনিক রিকেট হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করা হয় খনিজকরণের ত্রুটি ভিটামিন ডি থেকে বিচ্ছিন্ন অথবা দ্বিতীয় পর্যায়ভুক্ত ঘাটতি বৃদ্ধির প্লেটের নীচে হাড়ের কোষে অস্টিওড (অখনিজ উপাদান) সঞ্চয় করে এই কারণে নির্দিষ্ট সময়ের পর হাড় দুর্বল হয়ে যায় এবং বেঁকে যায় ভিটামিন ডি এর ঘাটতি নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি এর মাত্রা ক্ষারীয় ফসফাটেজ ফসফরাস এবং প্যারাথাইরয়েড হরমোনের মাত্রা জানার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয় যেখানে হাড়ের মধ্যের পরিবর্তন দেখা যায় তার জন্য এক্সরে পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়হাড়ের বায়োপসি প্রয়োজন হতে পারে এবং রিকেট বা অস্টিওম্যালাসিয়া নির্ণয়ের জন্য এটি হল সবচেয়ে সঠিক পদ্ধতিঅভাবের প্রকৃতি এবং তীব্রতা নির্ধারণ করে ভিটামিন ডিএর যথাযথ ডোজ এবং যতক্ষণ না এক্সরের ফলাফল স্বাভাবিক হয় ততক্ষণ ক্যালসিয়াম সম্পূরক দেওয়া হয়প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাকয়েকটি সহজ ব্যবস্থা রিকেট রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পরে আপনি অবশ্যইস্বাস্থ্যকর খাদ্য গ্রহণ করুন যাতে দুগ্ধজাত খাবার এবং ডিম অন্তর্ভুক্ত থাকেবাইরে সময় কাটান বিশেষ করে সকালের রোদেডাক্তারের সাথে পরামর্শের পর ভিটামিন ডিএর সম্পূরক গ্রহণ করুন বমি বমি ভাব এবং বমি হল খুবই সাধারণ লক্ষণ যা মূলত নাড়িভুঁড়ির রোগের সাথে সম্পর্কিত কিছু অবস্থা খুবই যন্ত্রণাদায়ক এবং কিছু ওষুধের পার্শ্বপতিক্রিয়ার ফলে হয় অনেক সময় এই উপসর্গগুলি সাধারণ অ্যানেস্থিয়ার পরবর্তী প্রভাব হিসাবে দেখা যায় বমি করা হল মুখ দিয়ে পেটের খাবার বার করে পেট খালি করে দেওয়া যেখানে বমি বমি ভাব হল একটি অস্বস্তিকর অনুভূতি যা বমি করার আগে অভিজ্ঞতা করা হয় দুটো অবস্থাই সারানো যায় এবং সাধারণত এই রোগ খুব গুরুতর স্বাস্থ্যের সমস্যা বোঝায় না বমি বমি ভাব এবং বমি করা হল কোন রোগের অবস্থা কে চিহ্নিতকরণ করা যদিও বমি বমি ভাব এবং বমির ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি দেখা যায়দ্রুত নাড়ির স্পন্দনশুকনো মুখঅজ্ঞান হয়ে যাওয়া বা মাথা ঘোরাহালকা মাথাচাড়াবিহ্বলতাতলপেটে ব্যথা বমি বমি ভাব এবং বমি করা অনেকগুলো কারণের জন্য হতে পারে যেমনমোটর সিকনেস বা সী সিকনেসপেটের সংক্রমণগলব্লাডারে প্রদাহমাইগ্রেনভার্টিগোব্রেন ইনজিউরি বা ব্রেন টিউমারপেটের আলসারহাইপারঅ্যাসিডিটিগর্ভাবস্থায় প্রথম তিনমাসভয়অপ্রীতিকর গন্ধখাওয়া দাওয়ার ব্যাধিখাদ্যে বিষক্রিয়াওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াসাধারণ অ্যানাস্থেসিয়াকেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশন থেরাপি বমি বমি ভাব এবং বমি করার অনেক কারণ হতে পারে তাই নির্দিষ্ট কারণ খুজে বার করাটা জরুরী সফলভাবে চিকিৎসা করার জন্য এই উপসর্গগুলি কি কারণে দেখা দিচ্ছে তা বোঝার জন্য রোগীর চিকিত্‍সাগত ইতিহাস এবং তার ব্যক্তিগত ইতিহাস সাহায্য করে আর সাধারণত অন্য নির্দিষ্ট উপসর্গগুলিও রোগের অন্তরনিহিত কারণ বুঝতে সাহায্য করে ইমেজ স্টাডিং রক্ত পরীক্ষা বা কোন নির্দিষ্ট রোগের জন্য পরীক্ষা করা যেতে পারে যাতে আমরা রোগের অবস্থা জানতে পারিবেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বমি স্ব সীমিত এবং পেটের সব জিনিস বেড়িয়ে যাওয়ার পরে বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসার প্রয়োজন পরে চিকিৎসার মধ্যে শুধু বমি বমি ভাবের এবং বমি করার যত্ন নেওয়াই নয় বরং অন্তরনিহিত কারণের চিকিৎসা করাও হয় সাধারণত নিম্নলিখিত চিকিৎসার পদ্ধতির উপদেশ দেওয়া হয়অ্যান্টি নসিয়া এবং অ্যান্টি এমেটিক ওষুধ যদি আপনি গর্ভবতী হন তাহলে আপনি নিজের গায়নোকোলজিস্টের পরামর্শ নিয়ে তবে ওষুধ খাবেনঅ্যান্টিমোশান অসুস্থতার প্রতিরধকারক ওষুধযে তরল ক্ষয় হয়েছে তার ভরণ করার জন্য মৌখিক হাইড্রেশনের মিশ্রণ বা স্যালাইনের মাধ্যমে রিহাইড্রেশন থেরাপি দেওয়া হয়কিছু প্রাকৃতিক টোটকা যেমন আদার ছোট টুকরো বা লবঙ্গ মুখে রাখলে বমি বমি ভাব থেকে রেহাই দিতে পারেবমি বমি ভাব এড়াতে অল্প অল্প করে খাওয়া এবং খাবার খাওয়ার পর জল খাওয়া খাওয়ার সময় জল খাওয়ার থকে বেশি সাহয্য করবে যদি বমি করা ওষুধের মধ্যমে নিয়ন্ত্রণ না করা যায় এবং দীর্ঘদিন ধরে থাকে তাহলে বিলম্ব না করে ডাক্তার দেখান ক্লান্তিকে সবথেকে ভালো বর্ণনা করা যায় আলস্য ও অবসাদ হিসাবে যাদের মধ্যে এই উপসর্গগুলো এবং নিদ্রালুভাব দেখতে পাওয়া যায় তাদেরকে ক্লান্তিগ্রস্ত বলা যায় এই নিষ্ক্রিয়তা এবং আলস্য হতে পারে মানসিক অথবা শারীরিক যা ঐ ব্যক্তির অন্তর্নিহিত শারীরিক বা মানসিক সমস্যার ইঙ্গিত হতে পারে ক্লান্তিগ্রস্ত ব্যক্তি সাধারণত একটু অন্যমনস্ক থাকেন এবং খুব ধীরে চলাফেরা করেন অন্যান্য যে উপসর্গ দেখা যেতে পারে সেগুলি হল মেজাজের দ্রুত পরিবর্তন শ্রান্তি জীবনীশক্তির অভাব এবং দুর্বল চিন্তাশক্তি লক্ষ্য করা যায় এছাড়া ক্লান্তিগ্রস্ত ব্যক্তির মধ্যে তৎপরতার অভাবও দেখতে পাওয়া যায় শারীরিক কিছু অসুস্থতা যেমন জ্বর বা ফ্লু দুর্বলতা এবং ক্লান্তিভাব সাধারণভাবেই দেখতে পাওয়া যায় এছাড়াও অন্য যেসব অসুখের ক্ষেত্রে এটি দেখা যায় সেগুলি হলহাইপারথাইরয়েডিসম বা উচ্চথাইরয়েডের সমস্যাহাইপোথাইরয়েডিসম বা নিম্নথাইরয়েডের সমস্যাস্ট্রোকগর্ভাবস্থাঅত্যধিক মদ্যপানজ্বরমেনিনজাইটিসমস্তিষ্কে আঘাতকিডনির সমস্যালাইম রোগশরীরে জলশুন্যতা কম ঘুম বা অসম্পূর্ণ পুষ্টিমানসিক সমস্যা যেমন বিষণ্ণতা উদ্বেগ গর্ভাবস্থাপরবর্তীকালীন বিষণ্ণতা বা প্রিমেনস্ট্রুয়্যাল সিনড্রোম বা মাসিকচক্রের পূর্ববর্তীকালীন সমস্যাঅ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ও অন্যান্য কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ক্লান্তি নির্ণয়ের জন্য রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসাগত ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা প্রয়োজনীয় হৃদযন্ত্র ও ফুসফুসের পরীক্ষাও করা হতে পারে এছাড়াও চিকিৎসক রোগীর মানসিক সচেতনতা ও অন্ত্রের শব্দ ও ব্যথার পরীক্ষা করতে পারেন সম্ভাব্য কোন অসুখের জন্য রোগী ক্লান্তিতে ভুগছেন তা জানতে একাধিক টেস্ট ও ইমেজিং স্টাডি বা প্রতিবিম্বকরণ করা হয়ে থাকেক্লান্তির চিকিৎসা করার আগে এর অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয় করা প্রয়োজন কারণ জানা গেলে তার উপর নির্ভর করে এর চিকিৎসা শুরু করা যায় চিকিৎসক এর জন্য ওষুধ দিতে পারেন যেমন মানসিক সমস্যার কারণে ক্লান্তি হলে এন্টিডিপ্রেসেন্ট দেওয়া হয় যথেষ্ট জলপান পরিমিত ঘুম সুষম খাদ্যগ্রহণ ও মানসিক চাপ কমানোর মতো কিছু সহজ পদ্ধতি ক্লান্তি নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে যখন রোগসৃষ্টিকারী জীবণু আপনার শরীরে আক্রমণ করে তখন তারা তাদের সংখ্যা গুণ করে বা বাড়িয়ে তুলে নানা রকম উপসর্গ এবং প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে একে সংক্রমণ (ইনফেকশন) বলে সংক্রমণ (ইনফেকশন) ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক ভাইরাস এবং পরজীবীর কারণে হয় যা (শরীরের) ভিতরে ও বাইরে হতে পারে বেশিরভাগ প্যাথোজেন ব্যাপক বর্ণের বা ধারার রোগ সৃষ্টি করতে পারে সংক্রমণগুলি প্রাথমিকও হতে পারে যা বর্তমান স্বাস্থ্য সমস্যার কারণ অথবা দ্বিতীয় পর্যায়ভুক্তও হতে পারে যেখানে পূর্বে সংক্রমণ বা কোন ধরনের আঘাতের কারণে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যাওয়ার ফলে সংক্রমণ তৈরী হয় সংক্রমণের উপসর্গগুলি সাধারণত সংক্রমণের স্থানের উপর এবং যে ক্ষুদ্র জীবাণু এই সংক্রমণের কারণ তার উপর নির্ভর করে প্রধান উপসর্গগুলি হলফুলে যাওয়া এবং লাল হয়ে যাওয়াব্যথাজ্বরপেট খারাপলাল লাল ফুসকুড়িনাক দিয়ে জল পড়া বা সর্দিকাশিনড়াচড়া বা চলাফেরা করতে অসুবিধাস্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া বা নষ্ট হয়ে যাওয়া রোগ সৃষ্টিকারী জীবাণুগুলি হল ব্যাকটেরিয়া ছত্রাক ভাইরাস এবং প্যারাসাইট বা পরজীবী যেমন দাদ কেঁচোকৃমি উকুন মাছি এবং এঁটেল পোকা নীচের আলোচনা হিসাবে সংক্রমণ অনেক উপায়ে ছড়ায়ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিপশু থেকে ব্যক্তিমায়ের থেকে গর্ভে থাকা শিশুর মধ্যেদূষিত খাদ্য এবং জল থেকেপোকার কামড় থেকেসংক্রামিত ব্যক্তি ছুঁয়েছে এরকম কোনো জিনিস ব্যবহার করলেইয়াট্রোজেনিক সংক্রমণ (সংক্রামিত চিকিৎসার যন্ত্রপাতির কারণে)নসকমিয়াল সংক্রমণ (হাসপাতাল থেকে আসা) নির্ণয় পরীক্ষাগুলির মধ্যে রয়েছে ডাক্তার দ্বারা করা আপনার চিকিৎসার ইতিহাস সাধারণত নিম্নলিখিত রোগনির্ণয়সংক্রান্ত পরীক্ষাগুলি করার পরামর্শ দেওয়া হয়শারীরিক পরীক্ষামাইক্রোবায়োলজিকাল পরীক্ষাল্যাবরেটরি পরীক্ষা যেমন রক্তের নমুনা মূত্র মল গলার ভিতর এবং সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষাছবি পরীক্ষা যেমন এক্সরে এবং এমআরআইবায়োপসিপিসিআর (পলিমেরেজ চেইন রিঅ্যাকশন) ভিত্তিক পরীক্ষাইমিউনোঅ্যাসেস ইএলআইএসএ (এনজাইমলিংকড ইম্মুনোসরবেন্ট অ্যাসে) বা আরআইএ (রেডিও ইমিউনো অ্যাসে)একবার যদি আপনার সংক্রমণ সৃষ্টি করা জীবাণুর পরিচয় পাওয়া যায় তাহলে চিকিৎসা সহজ হয়ে যায় সংক্রমণের জন্য নিম্নলিখিত চিকিৎসাগুলি সহজেই করা যায়ওষুধ দ্বারা চিকিৎসাঅ্যান্টিবায়োটিকঅ্যান্টিভাইরাল ড্রাগসএন্টিপ্রোটোজোয়াল ড্রাগসঅ্যান্টিফাঙ্গালসটিকাকরণবিকল্প ওষুধগ্রীন টি ক্যানবেরি জুস আদা এবং রসুনের মত প্রাকৃতিক প্রতিকার যা সংক্রমণকে বিরুদ্ধে লড়াই করার দাবি করেযদিও প্রাকৃতিক প্রতিকার এবং বিকল্প চিকিৎসা বিশেষ করে আয়ুর্বেদিক ওষুধ দ্বারা সংক্রমণগুলির চিকিৎসা করা যায় তবুও সংক্রমণের কোনো উপসর্গ লক্ষ্য করলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়াটাই শ্রেয় অ্যান্টিবায়োটিকে ক্ষুদ্র জীবাণুগুলির বাধা রদ করার জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকের নিয়ামকগুলি ব্যবহার করা এবং এটি সম্পূর্ণ করা গুরুত্বপূর্ণ সব সংক্রমণের চিকিৎসার প্রয়োজন নেই কিছু কিছু নিজেই সেরে যায় কিন্তু গুরুতর সংক্রমণের জন্য ডাক্তারের পরামর্শ এবং ঠিক সময় চিকিৎসার প্রয়োজন পরিচ্ছন্নতা স্বাস্থ্যবিধি এবং সঠিক স্বাস্থ্যব্যবস্থা বজায় রাখলে তা সংক্রমণের প্রেষণ রদ করতে পারে যার ফলে সংক্রামক রোগ বিস্তার সীমিত হয় কলোরেক্টাল ক্যান্সার বৃহদান্ত্র কোলন বা মলদ্বার অথবা উভয়কেই প্রভাবিত করে এবং কোলন অথবা মলদ্বারের ভিতরের আস্তরণে প্রোট্রুশন হিসাবে শুরু হয় কোলন মল থেকে অতিরিক্ত জল শোষণ করে এবং মলদ্বার থেকে মল না বেরোনো পর্যন্ত মল সংরক্ষণ করেভোজনপ্রণালী এবং কম স্থূলতার হারের কারণে অন্য দেশগুলির তুলনায় ভারতে কলোরেক্টাল ক্যান্সারের হার কম বলে মনে করা হয় তবে বেঁচে থাকার হার পাঁচ বছরের কম হয় দেখা যাওয়া সাধারণ উপসর্গগুলি নিম্নে দেওয়া হলদীর্ঘ দিন ধরে হওয়া পাতলা পায়খানা বা কোষ্ঠকাঠিন্য মত আন্ত্রিক অভ্যাসের পরিবর্তনঅসম্পূর্ণ মলত্যাগের একটি অনুভূতিক্ষুদ্র আকারের মলকোলন বা মলদ্বারে রক্তপাতের কারণে গাঢ় রঙের মলপেট ব্যথাদুর্বলতাঅপ্রত্যাশিত ভাবে ওজন কমাসাধারণত উপসর্গগুলি পরের পর্যায়ে প্রকাশমান হতে শুরু করে এবং তার পাশাপাশি পরিস্থিতির তীব্রতা এক ব্যক্তি থেকে অন্য ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হয়এই উপসর্গগুলি ক্রোনের রোগ আলসারেটিভ কোলাইটিস অর্শ এবং সংক্রমণের মতো অবস্থায় দেখা যায় সঠিক কারণটি খুঁজে পাওয়া যায় নি কিন্তু এইগুলোর ক্ষেত্রে কলোরেক্টাল ক্যান্সারের বাড়ার ঝুঁকি আরও বেশি50 বছরের বেশি বয়সী পুরুষদেরব্যক্তিটির পরিবারে যখন কলোরেক্টাল ক্যান্সার চলতে থাকেখুব মোটা মানুষেরসিগারেট ধূমপায়ীদেরযারা মদ খায়লাল এবং প্রক্রিয়াজাত মাংস ভোক্তাদেরকম ফাইবার খাওয়া ব্যক্তিদেরযারা অলস জীবনযাপন করেঅঙ্গ প্রতিস্থাপন করার জন্য যে মানুষ ইমিউনোসাপ্রেসেন্ট ওষুধগুলি অনুসরণ করছেন তাদেরডায়াবেটিস মেলিটাসের সাথে ইনসুলিন প্রতিরোধ এবং এইচআইভি সংক্রমণের মত রোগ আছে যাদেরপ্রোস্টেট ক্যান্সার হওয়া ব্যক্তি যে আগে থেকে রেডিয়েশন থেরাপির ইজিতে আছেনপূর্বে গলব্লাডার অপসারণ হওয়া ব্যক্তিরপূর্বে করোনারি হার্ট ডিজিজ হওয়া ব্যক্তিরযদি আপনার ঝুঁকির বিষয় থাকে যে আপনার ক্যান্সার বিকাশ হতে পারে তবে এটা হওয়া আবশ্যক নয় কিন্তু ঝুঁকির বিষয় সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে যদি আপনার রক্তাক্ত মল বা রেক্টাল রক্তপাত হয় তবে অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের থেকে পরামর্শ নিন যা একটি স্বাভাবিক অবস্থা নয়আপনার ডাক্তার কোন পিন্ড বা অস্বাভাবিকতা খুঁজে পেতে একটি রেকটাল পরীক্ষা করবেন আপনার হিমোগ্লোবিন লোহিত রক্তের কোষ (যা রক্ত ক্ষরণের কারণে কমে যেতে পারে) এবং অন্যান্য কোষের সংখ্যা পরীক্ষা করার জন্য তিনি রক্ত পরীক্ষা এবং লিভার ও কিডনি পরীক্ষা করবেন রোগের পুনরাবৃত্ত হওয়ার ক্ষেত্রে রক্তে নির্দিষ্ট অ্যান্টিজেনের মাত্রা খুঁজে বের করার জন্য পরীক্ষা করা হয় কোলোনোস্কোপি কলোরেক্টাল ক্যান্সারের জন্য একটা স্ক্রীনিং পরীক্ষা যা পলিপস সনাক্ত করার জন্য করা হয় ক্যান্সার অন্যান্য অঙ্গ প্রভাবিত করেছে কিনা তা সনাক্ত করার জন্য কখনও কখনও বুকের এক্সরে আল্ট্রাসোনোগ্রাফি এবং সিটি স্ক্যান করা হয়সার্জারি হল প্রথম চিকিৎসার বিকল্প কেমোথেরাপিউটিক ওষুধ চিকিৎসার জন্য দেওয়া হয় বিশেষ ক্ষেত্র ছাড়া রেডিয়েশন থেরাপি ব্যাপকভাবে ব্যবহার করা হয় না ইমিউনোথেরাপি ক্যান্সারের উচ্চ পর্যায়ে ব্যবহৃত হয় অন্ত্র অসংযম বলতে এমন একটি অবস্থাকে বোঝায় যেখানে একজন মলের বা মলত্যাগের বেগকে ধরে রাখতে পারে না এইভাবে অন্ত্র খালি করার কাজটি অনিচ্ছুকভাবে বা দূর্ঘটনাক্রমে ঘটে যেতে পারে এই ঘটনাটি বয়ষ্ক বিশেষত বয়ষ্ক মহিলাদের মধ্যে দেখা যায় এটি মাঝে মাঝে ঘটতে পারে বা অবস্থা মারাত্মক জায়গায় পৌঁছাতে পারে তখন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা প্রয়োজন এই অনিচ্ছুকভাবে ঘটা ঘটনা অস্বস্তিকর পরিস্থিতিতে পরার ভয়ে সামাজিক জীবন থেকে একজনকে আলাদা করে দিতে পারে দুই ধরণের অন্ত্র অসংযম আছে ও ধরণ অনুযায়ী উপসর্গগুলিও বদলায়তাড়নাযুক্ত ফিকাল ইনকন্টিনেন্সআপনি মল ত্যাগ করার তাগিদ অনুভব করবেন কিন্তু টয়লেটে পৌঁছানো পর্যন্ত তা আটকে রাখতে পারবেন নাঅন্ত্র ফিকাল ইনকন্টিনেন্সএই ধরণটিতে আপনি মলত্যাগ না হয়ে যাওয়া পর্যন্ত কোনও তাগিদ অনুভব করতে পারবেন নাবারবার বাতকর্মের ইচ্ছা (গ্যাস) নিরোধ করতে অসুবিধা এবং মলের বিন্দু বা দাগ অন্ত্র ফিকাল ইনকন্টিনেন্সের একটি উপসর্গ অন্ত্র অসংযমের বিভিন্ন কারণগুলি হলপেট খারাপমারাত্মক কোষ্ঠকাঠিন্যসার্জারি বা আঘাতের কারণে পায়ুগত পেশীর দূর্বলতামলদ্বার বা পায়ুর স্নায়ু সার্জারি বা আঘাতে ক্ষতিগ্রস্ত হলেঅর্শ/পাইলসপায়ুর ঝুলে যাওয়ামহিলাদের ক্ষেত্রে যোনির মধ্য দিয়ে পায়ুর বহির্মুখ প্রকাশগ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল অংশে সমস্যা যেমন ক্রোনের রোগ আলসারেটিভ কোলাইটিস ও ইনফ্লেমেটরি বা প্রদাহী অন্ত্রের রোগরোগের অবস্থা যেমন ডায়াবেটিস বা বহুমুত্ররোগ পারকিনসনিজম স্ট্রোক স্মৃতিভ্রংশ এবং মাল্টিপল স্কলেরোসিসস্বাভাবিক প্রসবঅলস জীবনযাপন আপনার ডাক্তার রোগের উপসর্গগুলির পূর্ব ইতিহাস ও অন্যান্য শারীরিক অবস্থা সম্বন্ধে জানতে চাইতে পারেন সাথে শারীরিক পরীক্ষাও করতে পারেন কতটা ঘন ঘন ও মারাত্মকভাবে অবস্থাটি ঘটে থাকে তার উপর নির্ভর করে ডাক্তার অন্যান্য উপসর্গগুলির পরীক্ষা করতে দিতে পারেন যেমন অ্যানোস্কপি (মলদ্বারের ভিতরের অংশ দেখার জন্য) অ্যানোরেকটাল মেনোমেট্রি (পায়ুর পেশীতে কোনও দূর্বলতা আছে কি না তা জানার জন্য) এন্ডোঅ্যানাল আলট্রাসোনোগ্রাফি এবং ডিফিকোগ্রাফি (অঙ্গ সমূহের প্রতিবিম্বকরণ এটা জানার জন্য যে পায়ু মলদ্বার অথবা এর পেশীতে কোনও সমস্যা আছে কিনা)এর চিকিৎসাগুলি হলখাদ্যতালিকায় পরিবর্তন তন্তুময় বা আঁশালো খাবার খাওয়া এবং প্রচুর জল পানজীবনশৈলীতে পরিবর্তনপেশীগুলিকে শক্তিশালী করতে শরীরচর্চাপ্রতিদিন নির্দিষ্ট সময়ে মলত্যাগের অভ্যাস গড়ে তোলাঅভ্যন্তরীণ কারণগুলির চিকিৎসায় ওষুধ খাওয়াঅবস্থার গুরুত্ব ও কারণ অনুযায়ী সার্জারি করা হয়ে থাকে স্বাভাবিকভাবে শরীরের মধ্যে উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া কোনও ক্ষতির করণ হয় না কিন্তু এখানে পরিবেশের মধ্যে শরীরের বাইরেও কিছু অন্যান্য ব্যাকটেরিয়া উপস্থিত আছে এই ব্যাকটেরিয়া শরীরের প্রবেশ করে সংক্রমণ সৃষ্টি করে এবং একে প্যাথোজেনিক ব্যাকটেরিয়া বলা হয় নির্দিষ্ট পরিস্থিতিতে অভ্যন্তরীণ সিম্বাওটিক ব্যাকটেরিয়াও দুর্বল অনাক্রম্যতা এবং তাদের অত্যধিক বৃদ্ধি কারণে সংক্রমণ ঘটাতে পারে ব্যাকটেরিয়ার মাধ্যমে সংক্রামিত হতে পারে এমন অঙ্গগুলি হল ফুসফুস গলা অন্ত্র ও চামড়া ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশন একজন সংক্রমিত ব্যক্তির থেকে একটি সুস্থ ব্যক্তির মধ্যে ছড়িয়ে যেতে পারে সুতরাং নিজের এবং আশেপাশের স্বাস্থ্য বজায় রাখতে এবং সংক্রমণ ছড়ানো আটকাতে সমস্ত প্রয়োজনীয় সতর্কতা নেওয়া উচিত ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের উপসর্গগুলি সংক্রামিত জায়গাটা এবং সংক্রমণের তীব্রতার উপর ভিত্তি করে পরিবর্তিত হয় ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের সাধারণ উপসর্গগুলি হলকাশিজ্বরমাথা ব্যাথাশরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়াঘামপেশী ব্যথাক্লান্তিশ্বাস নিতে অসুবিধাসংক্রমণের জায়গায় ব্যথা এবং অস্বস্তিসংক্রমণের জায়গায় ফোলা এবং লালভাবখিদে হারানো সাধারণ সংক্রমণসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়াগুলি হলস্ট্রেপ্টোকক্কাসস্টেফাইলোকক্কাসইকোলাইক্লেবসিয়েল্লাসিউডোমোনাসমাইকোব্যাকটেরিয়ামব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের ঝুঁকি বাড়তে পারে এমন বিষয়গুলি হলকাটা এবং ক্ষতব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের সাথে যুক্ত কোনো ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগসংক্রামিত খাদ্য এবং জল খাওয়াসংক্রামিত কোনো ব্যক্তির মলের সংস্পর্শে আসাসংক্রামিত ব্যক্তির হাঁচির সময় নির্গত কণায় শ্বাস নেওয়াপরোক্ষ ভাবে সংক্রমণ যেমন সংক্রামিতের উপরিভাগ ছোঁয়া ডাক্তার নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে এই রোগ নির্ণয় করেনব্যক্তির চিকিৎসার ইতিহাস সম্বন্ধে খোঁজ নেওয়াব্যক্তির শারীরিক পরীক্ষারেডিওগ্রাফিক ফলাফলরক্ত এবং প্রস্রাব পরীক্ষার মত ল্যাব টেস্টব্যাকটেরিয়ার ধরন এবং আক্রান্ত অংশটির ওপর ভিত্তি করে ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের সঠিক চিকিৎসা করা হয় সাধারণত ব্যাকটেরিয়াল ইনফেকশনের চিকিৎসার জন্য ডাক্তারের পরামর্শে টপিকাল মৌখিক বা ইনজেকশনযোগ্য অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি করা হয় যদি আগে দেওয়া ওষুধ যথেষ্ট পরিমান ব্যাকটেরিয়া সরাতে না পারে তবে কখনও কখনও ডাক্তারকে অ্যান্টিবায়োটিক পরিবর্তন করতে হয় অ্যাসপারগার সিনড্রোম (এ এস) একটা বেড়ে ওঠায় সমস্যা জনিত রোগ যার ফলে ভাষাগত এবং মনোভাব আদানপ্রদান জনিত বিকলতা ও তার সাথে পুনরাবৃত্তিমূলক বা নিয়ন্ত্রনমূলক ভাবনাচিন্তার ধরণ ও আচরণ দেখা যায় এটি একটি সামান্য ধরণের অটিজম স্পেকট্রাম ডিসঅর্ডার এবং এর বৈশিষ্ট্য হল স্নায়বিক অকার্যকারিতা যা স্কুলে যাওয়া বাচ্চাদের মধ্যে দেখা যায় একটা বস্তুর বা বিষয়ের উপর অত্যধিক আগ্রহ ও অন্যান্য সবকিছুর প্রতি অনাগ্রহ অ্যাসপারগার সিনড্রোমের এক ধরণের উপসর্গঅন্যান্য সাধারণ উপসর্গগুলি হলোসম্পর্ক তৈরীতে অসুবিধাভালো পারস্পরিক সংযোগ স্থাপনের ক্ষমতা থাকা সত্বেও ভাব বিনিময়ে সমস্যাঅনুচিত সামাজিক ও আবেগ সংক্রান্ত ব্যবহারপুনরাবৃত্তিমূলকভাবে কাজকর্ম বা আচরণ করার জন্য জেদ প্রকাশখারাপ বা অপটু অঙ্গ সঞ্চালন ক্ষমতা(আরো পড়ুন অবসেসিভ কমপালসিভ ডিসঅর্ডার) অ্যাসপারগার সিনড্রোমের প্রধান কারণ মূলত জিনগত জীববিজ্ঞান সম্পর্কিত এবং পরিবেশগতযেসব শিশুর ভাইবোনদের অ্যাসপারগার সিনড্রোম আছে তাদের এই অসুখ হবার সম্ভাবনা আছেকিছু বিশেষ ওষুধ থেকে এই রোগের ঝুঁকি বেড়ে যায় যেমন ভ্যাল্প্রোইক অ্যাসিড এবং থ্যালিডোমাইড যা গর্ভাবস্থায় খাওয়া হয়বিলম্বিত গর্ভধারণ শিশুর অ্যাসপারগার সিনড্রোম হওয়ার বিপদ বাড়িয়ে দেয়(আরো পড়ুন ডাউন সিনড্রোমের কারণ) শিশু চিকিৎসক দ্বারা শিশুর দক্ষতা ও যোগ্যতা পরীক্ষা দ্বারা এই রোগ নির্ণয় করা সম্ভব রোগ নির্ণয় করার সময় স্পীচ থেরাপিস্ট ও সাইকোলজিস্ট বা মনোবিদের সাহায্যও নেওয়া হয়সামাজিক ও আবেগগত প্রশ্নাবলীর সহায়তায় ভাব আদানপ্রদান করার ক্ষমতা শেখার ক্ষমতা নড়াচড়া করার ক্ষমতা এবং বিশেষ আগ্রহ প্রভৃতি দেখা হয়অ্যাসপারগার সিনড্রোমে আক্রান্ত শিশুর নিজের ভাষাগত দক্ষতা সঠিকভাবে বিকশিত হয় না এবং আই কিউ অটিজম স্পেকট্রাম রোগে আক্রান্ত শিশুদের তুলনায় মাঝারি বা তুলনায় বেশী হয়বাস্তবে অ্যাসপারগার সিনড্রোমের চিকিৎসায় আসল সমস্যাগুলির উপর জোর দেওয়া হয় যার মধ্যে আছেস্পীচ থেরাপি সহ ভাব আদানপ্রদানের দক্ষতাঅকুপেশনাল থেরাপি সহ অঙ্গ সঞ্চালনের দক্ষতাচিন্তাজনক ও পুনরাবৃত্তিমূলক কর্মসূচিতে লক্ষ্য দেওয়াকার্যকরী চিকিৎসার মধ্যে সামাজিক দক্ষতার প্রশিক্ষন বুদ্ধিমত্তাযুক্ত আচরণগত থেরাপি এবং উদ্বেগ রোধের ও মনোযোগ সম্পর্কিত সমস্যার ওষুধ দেওয়া হয়অ্যাসপারগার সিনড্রোম সম্পুর্ণ সারে না কিন্তু সহযোগিতা বোঝাপড়া এবং প্রশিক্ষণ দীর্ঘ সময় পর্যন্ত উন্নত জীবনযাপন করতে সাহায্য করতে পারে(আরো পড়ুন এ ডি এইচ ডি চিকিৎসা) অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা একটি খাদ্যাভ্যাসজনিত রোগ উপরন্তু একটি মানসিক রোগ যাতে একজনের ওজন কমানোর ইচ্ছা অস্বাভাবিকভাবে শরীরের ওজন কমানোতে পরিণত হয় এটা দেখা গেছে যে রোগীর সুস্থ শরীর সম্বন্ধে বিকৃত ধারনা থাকে এবং ওজন কমানোর জন্যে কঠোর পরিশ্রম করে যদিও অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসা সাধারণত কৈশোরে শুরু হয় এটি অপেক্ষাকৃত ছোট শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যেও দেখা যায় খাদ্যাভ্যাস সম্পর্কিত উপসর্গগুলিরোগা হওয়া সত্বেও খাবার তালিকায় হরেকরকম বাধানিষেধঅযথা বাহানা দিয়ে খাবার না খাওয়ার অভ্যাসখুব অল্প খাওয়া সত্বেও খাবার ও ক্যালরি নিয়ে বাতিকপ্রায়ই খাবার খাওয়ার ভান করা বা খাবার খাওয়া নিয়ে মিথ্যা কথা বলাচেহারা ও শরীরের আকারগত উপসর্গগুলিহঠাৎই প্রচুর ওজন কমে যাওয়ানিজের ওজন বেশী ভাবা নিয়ে ভ্রমনিজেকে কেমন দেখাচ্ছে তা নিয়ে বাতিকগ্রস্তের মতো সচেতনতাসবসময়ে নিজের শরীর ও চেহারা নিয়ে খুঁতখুতে হওয়ানিজেকে পরিশুদ্ধ করার উপসর্গগুলিঅতিরিক্তব্যায়ামখাবার পরে জোর করে বমি করাওজন কমানোর জন্যে ওষুধ (যেমন জোলাপ) খাওয়াযেসব সতর্কতামূলক চিহ্ন ও উপসর্গগুলির দিকে নজর রাখতে হবে বিষণ্ণতা উদ্বেগ ভঙ্গুর হাড় ও নখ খুব বেশী চুল পড়া ঘন ঘন অজ্ঞান হওয়া অ্যানোরেক্সিয়া কোনো একটি কারনে হয় না এটির পিছনে বহুমুখী সমস্যা থাকেসাধারণ কারনগুলিপারফেক্সনিজম বা উৎকর্ষবাদীতা বাতিকগ্রস্ত ও প্রতিযোগিতামূলক পারিবারিক রীতিপারিবারিক দ্বন্দ্বশিক্ষাগত চাপপরিবারের সদস্যদের অনিয়মিত খাদ্যাভাসযে কারনগুলি এই সমস্যাকে ত্বরান্বিত করেগালিগালাজপূর্ণ শৈশববয়ঃসন্ধি বা কিশোর অবস্থার সূত্রপাত রোগ নির্ণয়ের মাপকাঠিএকটা নির্দিষ্ট বয়সের অনুপাতে যে ওজন ও উচ্চতা থাকা উচিৎ সেই অনুপাতে সঠিক বা তার আশেপাশে ওজন না রাখাওজন কম হওয়া সত্বেও খুব বেশী ওজন বেড়ে যেতে পারে ভেবে অকারণ ভয়ওজন ও আকারের বিচারে নিজের চেহারা সম্বন্ধে অবাস্তব ধারনামেয়েদের মধ্যে যাদের মাসিক রজঃস্রাব শুরু হতে চলেছে কম করে তিন মাস রজঃস্রাব না হওয়াচিকিৎসাপ্রাথমিক স্তরেই ব্যবস্থা নেবার জন্য হাসপাতালে ভর্তি করে পুনরায় খাওয়ানো শুরু করতে হবে যাতে ওজন বাড়ানো যায় এটি কিশোর ও তরুণদের জন্য প্রযোজ্যদ্বিতীয় উপায় হিসেবে খাদ্যতালিকা বিষয়ক বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ও তার সাথে সাইকোথেরাপি করানো এক্ষেত্রে পরিবারের সদস্যদের রোগীকে পুনরায় খাওয়ানোর দায়িত্ব নিতে হবে এই প্রক্রিয়ায় ফল খুব ধীরে পাওয়া যায় কিন্তু ওজন বাড়ার হার বজায় থাকেঅ্যানোরেক্সিয়ার জন্য সাইকোথেরাপি পদ্ধতিটি দীর্ঘকালীন ও জটিল হয় এবং জ্ঞানীয় ও আচরনগত থেরাপি এর অন্তর্ভুক্ত থাকে যাতে জ্ঞানীয় পরিকাঠামোতে পরিবর্তনের উপর জোর দেওয়া হয় ও তার সাথে সহযোগিতামূলক থেরাপি যোগ করা হয় একটি সুস্থ থেরাপিগত সম্পর্ক টিকিয়ে রাখার জন্য সহযোগিতামূলক থেরাপি প্রয়োজন হয় এভাবেই অ্যানোরেক্সিয়া নার্ভোসার কারণগুলি চিহ্নিত করা ও তার সমাধান করা সম্ভব হবে মলদ্বারে ফিস্টুলা হলো একটা অস্বাভাবিক ছোট নালী যেটা মলাশয় এবং মলদ্বারের চামড়ার মাঝে তৈরি হয় মলদ্বারের গ্রন্থিতে পূঁজ হলে তা ফিস্টুলা তৈরি করে মলাশয় এবং পায়ুর মধ্যের নালীটা হল মলদ্বারের নালী যেখানে অনেকগুলি মলদ্বারের গ্রন্থি রয়েছে এই গ্রন্থিগুলিতে সংক্রমণ হলে তা পূঁজ গঠনের কারণ হতে পারে যা নলটির মাধ্যমে পায়ুতে যায় ফলে নালীটা খুলে যায় মলদ্বারের আশেপাশে ব্যথা এবং জ্বালা হল এর প্রধান উপসর্গ কোথাও বসতে গেলে বা হাঁটাচলা করলে বা একটি অন্ত্র আন্দোলনের সময় (মলত্যাগ করার সময়) অবিরাম কম্পিত ব্যথা পায়ুর চামড়ার কাছাকাছি একটি বোঁটকা গন্ধ পূঁজ বেরোনো বা মলের মধ্যে রক্ত মলদ্বারের আশেপাশে ফোলা ভাব এবং লাল হওয়া জ্বর শরীর ঠান্ডা হয়ে যাওয়া ক্লান্তি এবং সাধারণত অসুস্থ অনুভব করা হল আরো কিছু উপসর্গ মলদ্বারে অধিমাংসের কারণে সাধারণত মলদ্বারে ফিস্টুলা বৃদ্ধি পায় পূঁজ বের করার পর যদি এই অধিমাংস ঠিকভাবে না সারে তখন এইগুলি হয় খুব কম ক্ষেত্রে তা ক্রোহনস ডিজিজ যক্ষারোগ ডাইভারটিকিউলাইটিস যৌন সংক্রামিত রোগ মানসিক আঘাত বা ক্যান্সারের মতো অবস্থাও ঘটাতে পারে অ্যানোরেক্টাল উপসর্গ এবং চিকিৎসার ইতিহাসের একটি সতর্ক পর্যবেক্ষণ এই রোগটি নির্ণয় করতে সাহায্য করবে ডাক্তার আপনাকে জ্বর দুর্বলতা ফোলাভাব এবং লালচে ভাবের মতো লক্ষণগুলির সন্ধান করতে পরীক্ষা করবে কিছু অধিমাংস মলদ্বারের ত্বকের উপর আচমকা বাহ্যিকভাবে দেখা যেতে পারে শারীরিক পরীক্ষার সময় রক্ত অথবা পূঁজ বেরোতে দেখা যেতে পারে পূঁজ অথবা রক্ত বেরোচ্ছে কিনা দেখার জন্য ডাক্তাররা জায়গাটাতে চাপ দিতে পারেন একটি ফিস্টুলা প্রোব অ্যানোস্কোপ এবং ইমেজিং স্টাডিজ (আল্ট্রাসাউন্ড এমআরআই বা সিটি স্ক্যান) ব্যবহার করা যেতে পারে ডিজিটাল রেকটাল পরীক্ষা বেদনাদায়ক হতে পারে এবং পূঁজ মুক্ত করতে পারে ফিস্টুলা অনেক সময় তৎক্ষণাৎ বন্ধ হয়ে যায় কিন্তু মাঝে মাঝে আবার দেখা দিতে পারে তাই সেক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় করা আরো কঠিন হয়ে যায়এর চিকিৎসার জন্য আজ পর্যন্ত কোন ওষুধ অথবা ড্রাগ পাওয়া যায় নি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সার্জারির মাধ্যমে ফিস্টুলার চিকিৎসা করা হয় এটা নিজে থেকে ঠিক হয় না চিকিৎসার জন্য সার্জারির সাথে এন্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয় সার্জিকাল চিকিৎসার বিকল্পগুলি নিচে দেওয়া হলফিস্টুলটোমিএই পদ্ধতিতে সম্পূর্ণ ফিস্টুলাটা কেটে ফেলা হয় এবং অন্যান্য ক্ষত গুলোর মতো সারতে দেওয়া হয়সিটোন পদ্ধতিসিটোন নামক একটি পাতলা অস্ত্রোপচারের রাবারকে ফিস্টুলায় আটকানো হয় এবং এর অন্য প্রান্তের সাথে বলয় আকারে যোগ করা হয় ক্ষত সারানোর জন্য এটা কয়েক সপ্তাহের জন্য আটকানো হয় এর সাথে সাথে ফিস্টুলার চিকিৎসার জন্য অন্যান্য প্রয়োজনীয় অস্ত্রোপচার পদ্ধতি অনুসরণ করা হয়অন্যান্য কৌশলঅন্যান্য পদ্ধতি যেমন আঠা টিস্যু বা একটি বিশেষ প্লাগের ব্যবহার করেও ফিস্টুলা সারানো যায়রিকন্সট্রাক্টিভ সার্জারিসম্পূর্ণভাবে ফিস্টুলা বন্ধ করার পদ্ধতি এনাল ক্যান্সার হল গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল সিস্টেমের একটি বিরল ম্যালিগন্যান্সি বা খারাপ অবস্থা এর ফলে শতকরা খুব অল্প (15) হারে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ক্যান্সার হয় কিন্তু এই ক্যান্সারের প্রকোপ যথেষ্টভাবে যে বাড়ছে তার প্রমাণ পাওয়া গেছে এনাল ক্যান্সার হল মলদ্বারের ক্যান্সার অথবা এনাল ক্যানেল যেটি পায়ুর একদম শেষ ভাগ সাধারণ লক্ষণ এবং উপসর্গ গুলি হলমলদ্বার থেকে রক্তপাত এবং ব্যথাফিস্টুলাসের উপস্থিতি (এনাল ক্যানাল অথবা পায়ুনালী এবং নিতম্বের ত্বকের মধ্যে অস্বাভাবিক সরু নালীর মতো সংযোগ) বা লিউকোপ্লাকিয়ার (সাদা পুরু ননস্ক্রাপেবেল প্যাচ বা কঠিন হয়ে যাওয়া অংশ) উপস্থিতিশারীরিক পরীক্ষা করার সময় সহজে সনাক্ত করা যায় এমন স্ফীত লিম্ফ নোডপায়ুর প্রান্তে ক্যান্সারে যে সকল ঘায়ের বৈশিষ্টগুলি প্রকাশ পায় তা হল উত্থিত শক্ত (একটি দৃঢ় ভিত্তি যুক্ত) এবং উন্নীত কিনারা দেখা যায়বিরল লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো হলমলদ্বারে একটি মাংসপিন্ডের উপস্থিতিচুলকানি এবং তার সাথে তরলের নির্গমণপেশীচক্র (স্ফিঙ্কটার) যা মল নির্গমণ নিয়ন্ত্রণ করে তার কার্যক্ষমতা কমে যাওয়া ফলে পায়ুর মল ধরে রাখার ক্ষমতা হারিয়ে যায়লিভার বা যকৃৎএর আকৃতি বেড়ে যাওয়াপ্রাথমিক পর্যায়ের পায়ুর ক্যান্সারএর অনাসন্ন বিস্তার সবচেয়ে সাধারণ কারণমানব প্যাপিলোমাভাইরাসের সংক্রমণ একটি যৌনবাহিত রোগ যা ধীরে ধীরে এনাল ক্যান্সারের কারণ হয়ে দাঁড়ায়ঝুঁকির কারণগুলি হলদুর্বল রোগ প্র্রতিরোধক ক্ষমতাঅ্যাকুয়ার্ড ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি সিনড্রোম (এইডস)দুর্বল রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা বা রোগ প্রতিরোধক ক্ষমতা দীর্ঘস্থায়ীভাবে অকার্যকরী থাকাবয়স এবং লিঙ্গবয়স্ক পুরুষ ও মহিলাদের এটা বেশি হয়ে থাকেচিকিৎসাগত অবস্থাসার্ভিক্স স্ত্রীযোনিদ্বার বা যোনির ক্যান্সারআগে থেকেই দীর্ঘস্থায়ী প্রদাহজনক আন্ত্রিক রোগ থাকলেজীবনযাত্রাধূমপানএকাধিক সঙ্গীর সাথে সহবাস করাসমকামীতা বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে রোগ নির্ণয়এনাল ক্যান্সার শুধুমাত্র চিকিৎসাকেন্দ্রে উপস্থিত হয়ে এবং উপসর্গের ভিত্তিতে নির্ণয় করা যায় না টিউমারের পরীক্ষা করার জন্য অচেতন করার পর শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি ডাক্তার এনাল ক্যান্সার সনাক্ত করার জন্য নিচের পরীক্ষাগুলি করার পরামর্শ দেনএন্ডোএনাল আল্ট্রাসাউন্ড ইমেজিংম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এম আর আই)কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি (সি টি) স্ক্যান/পজিট্রন এমিশন টোমোগ্রাফি (পি ই টি) স্ক্যানচিকিৎসাবেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এনাল ক্যান্সারের প্রাথমিক চিকিৎসা করা হয় রেডিওথেরাপি দিয়ে সঙ্গে কেমোথেরাপি অথবা কেমোথেরাপি ছাড়া বয়স্ক ও দুর্বল রোগীদের জন্য কেমোথেরাপি এবং অ্যান্টিবায়োটিক প্রফিল্যাক্সিস উন্নত করা জরুরিরেডিওথেরাপি করার ক্ষেত্রে অসুবিধা হল রেডিওনেক্রসিস (বিকিরণএর কারণে টিস্যুর ক্ষতি বা নষ্ট হওয়া) যার কারণে অস্ত্রপ্রচার একটি নিরাপদ বিকল্প হয়ে ওঠে আক্রমনাত্মক ক্যান্সারের ক্ষেত্রে অ্যাবডোমিনোপেরিনিয়াল এক্সিশন বা ছেদন(মলদ্বার অপসারণ যেখানে মলাশয় এবং মলদ্বারের একটা অংশ কেটে বাদ দিয়ে দেওয়া) করা হয় মারাত্মক ধরণের ক্যান্সারের ক্ষেত্রে বা যেসব ক্যান্সারের বারবার পুনরাবৃত্তি হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাদের ক্ষেত্রে টিউমার এর অংশটা কেটে বাদ দেওয়াটাই হল উপযুক্ত চিকিৎসাইনগুইনাল লিম্ফ নোডের জন্য রেডিয়েশন থেরাপি প্রয়োজনীয় রেডিয়েশন থেরাপির ফলে অবনতি বা ব্যর্থতার ক্ষেত্রে লিম্ফ নোডের অপসারণে অস্ত্রপ্রচার প্রয়োজন হয়বারবার হওয়া এনাল ক্যান্সার এর জন্য অ্যাবডোমিনোপেরিনিয়াল রেসেক্শন বা অংশ ছেদনের সাথে একটি কলোসটমি (কোলন বা মলাশয় কেটে বাদ দেওয়া) প্রয়োজনইনট্রাঅপারেটিভ রেডিওথেরাপি এবং ব্র্যাকিওথেরাপি (তেজস্ক্রিয় ইমপ্লান্টগুলি বসানো) মলদ্বারে ক্যান্সারের চিকিৎসা হওয়ার পর তার পুনরাবৃত্তির সম্ভাবনা কমায়অন্যান্য চিকিৎসার বিকল্পগুলি হল ফটোডাইনামিক (একটি নির্দিষ্ট তরঙ্গদৈর্ঘ্যের আলো ব্যবহার করে) থেরাপি এবং ইমিউনোথেরাপি আমাদের সকলেরই ভুলে যাওয়ার বিভ্রান্ত হওয়া অথবা মাঝে মাঝে ভুল জিনিসে মনোনিবেশ করার প্রবণতা আছে এটা তথ্যের অত্যধিক বোঝাইয়ের ফলে মানসিক চাপ মনোযোগ না দেওয়া ও অন্যান্য কারণে হতে পারে যখন এটি একটি মেডিকেল অবস্থার কারণে ঘটে তখন ঘটনা অভিজ্ঞতা এবং তথ্যেরস্মৃতিবিলোপ হয় তখন তাকে অ্যামনেশিয়া হিসাবে উল্লেখ করা হয় মানুষেরা যারা অ্যামনেশিয়ার অসুখে ভোগেন তারা তাদের নিজেদের ও তাদের চারপাশ সম্পর্কে সতর্ক থাকেন কিন্তু নতুন তথ্যের সাথে অসুবিধা অনুভব করেন অবস্থার লক্ষণগুলিকে বেষ্টন করেও অ্যামনেশিয়ার প্রধান ধরনগুলি দেওয়া হলঅ্যানটেরোগ্রেড অ্যামনেশিয়া অ্যামনেশিয়ার এই ধরনে কাজ করায় ও নতুন তথ্য মনে রাখায় অসুবিধার হয়রেট্রোগ্রেড অ্যামনেশিয়াএটা ঘটায় অতীতের কোনো ঘটনা বা তথ্য মনে রাখতে অসুবিধা হয়অন্যান্য উপসর্গগুলি সামিল করা হলডিসঅরিয়েন্টেশনভুল স্মৃতি যেমন স্মৃতি উদ্ভাবিত হয়েছে কিন্তু সত্য বলে বিশ্বাস করা হয়েছিল মস্তিস্কের একটি কাজ হল স্মৃতিশক্তি যখন মস্তিষ্কের কোনো একটি অংশ বিশেষকরে থ্যালামাস হিপ্পোক্যাম্পাস বা অন্য আনুষঙ্গিক কাঠামো আক্রান্ত হয় যা স্মৃতি এবং আবেগের জন্য দায়ি তখন এর ফলে অ্যামনেশিয়া হয় এর কিছু কারণ সামিল করা হলমস্তিষ্কে আঘাতস্ট্রোকসংক্রমণ এর কারণে মস্তিষ্ক ফুলে যাওয়ামস্তিষ্কে অপর্যাপ্ত অক্সিজেনের প্রবাহব্রেন টিউমারঅ্যালকোহল বা মদ্যপানসীজারযন্ত্রণাহর প্রভাবের ওষুধঅ্যাল্জায়মার অথবা ডিমেনসিয়া র মত মাথার রোগধাক্কা অথবা মানসিক আঘাতমানসিক চাপ ডিমেনসিয়া বা অ্যাল্জায়মারের মত অন্য অসুখের থেকে এটিকে প্রভেদ করতেও অ্যামনেশিয়ার জন্য একটি বিশদ মূল্যায়ন করা হয় এইগুলি সামিল করা হলস্মৃতিবিলোপের প্রকৃতি এর প্রগতি ট্রিগার বংশগত ইতিহাস পদার্থের অপব্যবহার দুর্ঘটনা এবং শারীরিক সমস্যা যেমন সীজার ক্যান্সার অথবা হতাশা জানার জন্য বিস্তারিত মেডিক্যাল পরীক্ষা যেহেতু ব্যক্তির স্মৃতি সংকটাপন্ন হয় পরামর্শের সময় একটি ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্য বা বন্ধু জড়িত হতে পারেপ্রতিক্রিয়া ভারসাম্য সংবেদনশীল প্রক্রিয়া এবং স্নায়ুতন্ত্র এবং মস্তিষ্কের অন্যান্য ক্রিয়াকলাপের জন্য শারীরিক পরীক্ষাদীর্ঘমেয়াদী এবং স্বল্পমেয়াদী স্মৃতিশক্তি হারানো বিচার চিন্তা এবং সাধারণ তথ্য প্রক্রিয়াকরণের জন্য পরীক্ষাসংক্রমণের সীজার সক্রিয়তা এবং মস্তিস্কের ক্ষতির জন্য পরীক্ষাপ্রায় সব ক্ষেত্রে অ্যামনেশিয়া অপরিবর্তনীয় হয় বা শুধুমাত্র আংশিকভাবে বিপরীত হতে পারে মুখ্য কাজ হল অবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা যেহেতু সম্পূর্ণ সুস্থতা সম্ভব নয় ঘন ঘন নিযুক্ত চিকিৎসা কৌশল নিচে দেওয়া হয়অক্যূপেশনাল থেরাপি (পেশাগত থেরাপি) নতুন তথ্য সহ ব্যক্তিদের সাহায্য করার কৌশলগুলি উন্নয়ন এবং তাদের অভিজ্ঞতার উপর ভিত্তি করে বিদ্যমান তথ্য এবং স্মৃতিগুলি গঠন করার ওপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করেনতুন প্রযুক্তির ব্যবহার অ্যামনেশিয়া সহ লোকেদের শিক্ষাদান করে তাদের দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপগুলির সাথে আরও ভালভাবে মোকাবিলা করতে সহায়তা করতে পারেপুষ্টির প্রয়োজনীয়তা নিয়ন্ত্রণ এবং অন্য কোন অন্তর্নিহিত অবস্থার চিকিৎসার জন্য ওষুধ অবস্থাটির আরও অবনতি প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে উইলমস টিউমার হলো এক ধরনের এমব্রায়োনাল বা ভ্রূণ সংক্রান্ত রেনাল বা কিডনির ক্যান্সার এটি শিশুদের মধ্যে দেখা দেওয়া সবচেয়ে সাধারণ নিরেট প্রাণঘাতী নিওপ্লাজম (ক্যান্সারযুক্ত টিউমার) ডাক্তার ম্যাক্স উইলমস নামে এক সার্জন এই অবস্থাটিকে প্রথমবার বর্ণণা করেছিলেন তবে ভিন্ন নামে এবং প্রথমদিকে এটি কিডনির কনজেনিটাল সার্কোমা নামে পরিচিত ছিল প্রায় সবসময়ই শিশু 10 বছর বয়সে পৌঁছানোর আগেই টিউমারটি হতে দেখা যায় উইলমস টিউমারের সাধারণ উপসর্গগুলি হলো তলপেটে প্রতীয়মান পিণ্ডের উপস্থিতি তলপেটে ব্যথা ক্ষুধামান্দ্য বমনেচ্ছা বমি হেমাচুরিয়া (প্রস্রাবে রক্তের উপস্থিতি) হেপাটোমেগালি (লিভার বাড়া) অ্যাসাইটিস (তলপেটে তরল জমা) কনজেস্টিভ হার্ট ফেইলিওর রক্তচাপ বৃদ্ধি ডিসমরফিজম (অস্বাভাবিক শারীরিক গঠন) প্যালোর উলিমস টিউমার হলো একটি বিরল রোগ এবং জিনগত কারণ এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে উইলমস টিউমারের প্যাথোজেনেসিস বোঝার ক্ষেত্রে সাবস্ট্যান্টিয়াল জেনেটিক্স এবং আণবিক গবেষণার অবদান রয়েছে ক্রোমোজোম 11য় পরিবর্তন উলিমস টিউমারের সঙ্গে যুক্ত উইলমস টিউমার নিম্নলিখিত উপায়ে নির্ণয় করা হয় তলপেটের উপরের অংশে ফোলাভাবের উপস্থিতি চিকিৎসাগত ইতিহাস এবং পারিবারিক ইতিহাস তলপেট এবং শ্রোণীর আলট্রাসোনোগ্রাফি শিশুদের মধ্যে হাইপোগ্লাইকেমিয়া (রক্তে শর্করা কম) কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি (সিটি) স্ক্যান কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) রেনাল (কিডনি) ফাংশন টেস্ট মূত্র বিশ্লেষণ লিভারের ফাংশন টেস্ট উইলমস টিউমারের চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে অস্ত্রোপচার কেমোথেরাপি এবং রেডিওথেরাপি অস্ত্রোপচারের ভূমিকাটি জটিল কারণ এতে টিউমারটি ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা থাকেট্র্যান্সপেরিটোনিয়াল রেডিক্যাল রিমুভাল এক ধরণের অস্ত্রপচার যাতে পেট কেটে কিডনিকে বাদ দেওয়া হয় এটি ইউনিল্যাটেরাল রেনাল টিউমারের জন্য সবথেকে পছন্দের অস্ত্রোপচারের পদ্ধতি অনেক ক্ষেত্রে কিডনি আংশিক বাদ দেওয়া এবং কেটে দেওয়াও হয় একবার বাদ দেওয়া হলে খুব দ্রুত সুস্থ হয়ে যায় একটা কিডনির উপর যাতে চাপ না পড়ে এবং সেই কারণে যাতে কোনও জটিলতা না হয় তার জন্য ডায়ালিসিসের প্রয়োজন হতে পারে ওয়েস্ট সিন্ড্রোম প্রথমবার চিহ্নিত এবং বর্ণনা করেছিলেন ডাক্তার ওয়েস্ট এটি মৃগী/ ইনফ্যান্টাইল স্পাসম বা শৈশবস্থায় খিঁচুনি বৌদ্ধিক বিকলাঙ্গতা এবং অস্বাভাবিক ধরণের মস্তিষ্কের তরঙ্গ প্রকৃতি প্রভৃতি একগুচ্ছ উপসর্গের সম্ভার হিসাবে বর্ণনা করা যায়ইয়স্পাসম বা খিঁচুনি সাধারণত জন্মের পরই শুরু হয়ে যায় সেই কারণে একে ইনফ্যান্টাইল স্পাসম বা শৈশবস্থার খিঁচুনি বলে উপসর্গগুলি মৃদু চোখ পিটপিটানি থেকে শুরু করে সারা শরীর অর্ধেক বেঁকে যাওয়া পর্যন্ত ভিন্ন মাত্রার হতে পারে চিকিৎসাগত সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গুলি হল অনৈচ্ছিক পেশীতে খিঁচুনি যা 1520 সেকেন্ড ধরে চলে এবং সব মিলিয়ে 1520 মিনিট স্থায়ী হতে পারে শরীর সামনের দিকে ঝুঁকে যাওয়া শরীর হাত পা শক্ত হয়ে যাওয়া হাত ও পা বাইরের দিকে নিক্ষিপ্ত অবস্থানে থাকা খিটখিটেভাব ধীর বিকাশ মাথা ঘাড় ও ধড়ের অনৈচ্ছিক সংক্ষেপণ মস্তিষ্কের ক্ষতি করে এরকম যেকোনও ধরনের অবস্থা থেকে এই রোগ দেখা দিতে পারে ওয়েস্ট সিন্ড্রোমের বিভিন্ন পরিকাঠামোগত বিপাকীয় এবং জিনগত কারণ রয়েছে ইডিওপ্যাথিক ইনফ্যান্টাইল স্পাসমের ক্ষেত্রে কারণ এখনও অজানা উপসর্গযুক্ত শিশুদের অর্ধেকের মধ্যেই পরিকাঠামোগত ক্রুটি জন্মপূর্ব অবস্থায় উপস্থিত থাকে 7075 শতাংশ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কারণ নির্ধারণ করা যায়নি টিউবেরাস স্কেলেরোসিস নামক জিনগত রোগও ওয়েস্ট সিন্ড্রোমের কারণ হতে পারে ডাউন সিন্ড্রোম স্টার্জওয়েবার সিন্ড্রোম সংক্রমণ ফিনাইলকিটোনিউরিয়া থেকেও ওয়েস্ট সিন্ড্রোম হতে পারে ওয়েস্ট সিন্ড্রোম নির্ণয়ের জন্য শারীরিক পরীক্ষা এবং পুঙ্খানুপুঙ্খ স্পাসম বা খিঁচুনির চিকিৎসা সংক্রান্ত ইতিহাস পর্যবেক্ষণ করা হয় তারপর নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করা হয়ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি)ব্রেন স্ক্যান যেমন – কম্পিউডেট টোমোগ্রাফি (সিটি) এবং ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই)রক্ত পরীক্ষা মূত্র পরীক্ষা এবং লাম্বার পাংচারের মাধ্যমে সংক্রমণ নির্ধারণ করাত্বকের পরীক্ষা করার জন্য উডস ল্যাম্প টেস্ট করা হয় ক্ষত চিহ্নিত করার জন্য এবং তা টিউবেরাস স্কেলেরোসিস কি না সে ব্যাপারে নিশ্চিত হওয়ার উদ্দেশ্যেজিনগত মিউটেশন বা পরিব্যাক্তি চিহ্নিত করতে মলিকিউলার জেনেটিক টেস্টের সাহায্য নেওয়া হতে পারেওয়েস্ট সিন্ড্রোমের চিকিৎসায় অ্যান্টিকনভালসেন্টের ব্যবহারে খুবই কম কার্যকারিতা দেখা গিয়েছে তবে অ্যাড্রেনোকর্টিকোট্রোপিক হরমোন কর্টিকোস্টেরয়েড এবং অ্যান্টিএপিলেপ্টিক বেশ কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত কর্টিকোস্টেরয়েড সাধারণত সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত হয় প্রাকৃতিক কর্টিকোট্রোফিনের তুলনায় সিন্থেটিক এসিটিএইচ (টেট্রাকোসাক্ট্রিন)এর অনেক বেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া রয়েছে কর্টিকোস্টেরয়েডের তুলনায় টিউবেরাস স্কেলেরোসিসের চিকিৎসায় অ্যান্টিএপিলেপ্টিক ওষুধ বেশি কার্যকরী হিসেবে প্রমাণিত ইনফ্যান্টাইল স্পাসমের মতো রিফ্র্যাক্টরি এপিলেপ্সি বা দুরারোগ্য মৃগীর ক্ষেত্রে কিটোজেনিক খাদ্যাভাস একটি উপযোগী চিকিৎসা পদ্ধতি শরীরের এক বা একাধিক মাংসপেশীর কর্মক্ষমতা হ্রাস পাওয়াকে দুর্বলতা বলে কিছু ব্যক্তি শুধুমাত্র দুর্বল লাগার অনুভূতি উপলব্ধি করেন কিন্তু শারীরিকভাবে কোনওরকম শক্তিক্ষয় উপলব্ধি করেন না উদাহরণ হিসেবে ব্যথার জন্য দুর্বলতা বোধ হওয়ার কথা বলা যেতে পারে আবার কিছু মানুষ কর্মক্ষমতা হ্রাসের ব্যাপারটি শুধুমাত্র শারীরিক পরীক্ষার সময় বুঝতে পারেন একে অবজেক্টিভ উইকনেস বলে দুর্বলতার সঙ্গে যুক্ত লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হল অসাড়ভাব প্রচণ্ড মাথাযন্ত্রণা বিভ্রান্তিবোধ হাঁটতে সমস্যা ক্লান্তি মাংসপেশীতে ব্যথা অনুভব করা অথবা ব্যথাভাব তন্দ্রালুভাব মাথা ঘোরা খিদে কমে যাওয়া শ্বাস নিতে সমস্যা শারীরিক দুর্বলতার অন্তর্নিহিত কারণ হল নির্দিষ্ট স্বাস্থ্য সংক্রান্ত সমস্যা যেমন শরীরে সোডিয়াম ও পটাশিয়ামের মাত্রাল্পতা শ্বাসযন্ত্র অথবা মূত্রলানীর সংক্রমণ থাইরয়েড হরমোনের স্বল্প বা উচ্চমাত্রা গুলেনবার সিন্ড্রোম মাইস্টিনিয়া গ্রাভিস (একটি দীর্ঘস্থায়ী রোগ যা মাংসপেশীকে দু্র্বল করে দেয়) স্ট্রোক অসুস্থ থাকার কারণে অক্ষমতা বিশেষত বয়ষ্ক ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ইন্টেনসিভ কেয়ার ইউনিট (আইসিইউ) মায়োপ্যাথি (আইসিইউতে লম্বা সময় থাকার কারণে মাংসপেশীর ক্ষয়) মাস্কুলার ডিস্ট্রফি হাইপোক্যালিমিয়া (পটাশিয়ামের মাত্রাপ্লতা) এবং অ্যালকোহলিক মায়োপ্যাথির মতো সাধারণ মায়োপ্যাথি (মাংসপেশীর টিস্যু বা শরীরকলার রোগ) পোলিও দৈহিক পরিশ্রম কম ঘুম হওয়া অনিয়মিত ব্যায়াম জ্বরের মতো অসুখে ভোগা অসম্পূর্ণ পুষ্টি নিম্নলিখিত পদ্ধতিগুলি দুর্বলতা নির্ণয়ে ব্যবহৃত হয়শারীরিক পরীক্ষা চলন ক্ষমতা তৎপরতা এবং করোটির স্নায়ুর কার্যকারিতা পরীক্ষা করা হয়কর্মক্ষমতা পরীক্ষা দুর্বলতার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ পেশীর দৃশ্যমান সঙ্কোচন মাধ্যাকর্ষণ শক্তির প্রতিকূলে অঙ্গপ্রত্যঙ্গ সঞ্চালন প্রতিবর্তী ক্রিয়া এবং অনুভূতির মতো পরিমাপকগুলি দ্বারা পরীক্ষা করা হয়হাঁটাচলার ভঙ্গিমা পর্যবেক্ষণ করা হয়দুর্বলতার কারণ অনুসন্ধানে চিকিৎসাজনিত ইতিহাস যাচাই করা হয়দুর্বলতার অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসা প্রদানের মাধ্যমে দুর্বলতার চিকিৎসা করা হয় গুরুতর দুর্বলতা সমস্যায় ভোগা মানুষদের প্রয়োজন পড়লে হাসপাতালে ভর্তি করার পরামর্শ দেওয়া হয় মাংসপেশীর কার্যক্ষমতার ক্ষয় কমাতে রোগীদের সাহায্যার্থে অকুপেশনাল থেরাপি এবং ফিজিক্যাল থেরাপি করানোরও পরামর্শ দেওয়া হয় যদিও উচ্চ রক্তচাপ অথবা হাইপারটেনশন হল একটা বহুল পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা কিন্তু রক্তচাপ মাত্রায় কোনরকমের অবনতিও (হাইপোটেনশন হিসাবেও যা পরিচিত) আপনার স্বাস্থ্যে কখনও কখনও সমস্যা ঘটাতে পারে রক্তচাপ হচ্ছে এমন চাপ যা হার্ট বা হৃৎপিণ্ডের সংকোচন (সিস্টোলি) এবং শিথিলকরণ বা প্রসারণের (ডায়াস্টোলি) সময় রক্তবাহী নালীগুলির (ধমনীগুলি) দেয়ালে রক্ত প্রয়োগ করে দুটো সংখ্যা ব্যবহার করে রক্তচাপের রিডিং (ব্যাখ্যা) নির্দেশ করা হয় এবং স্বাভাবিক মূল্যমান 120/80 mm পারদের হিসাবে উপস্থাপিত করে যদি রক্তচাপের রিডিং 90/60 mm পারদের হিসাবে বা তার নীচে হয় সেটাকে নিম্ন রক্তচাপ হিসাবে গণ্য করা হয় নিম্ন রক্তচাপ হয়তো কিছু মানুষের পক্ষে সাধারণ হতে পারে এবং লক্ষ্য করা নাও হতে পারে কিন্তু অন্যদের ক্ষেত্রে মাথা ঘোরা অজ্ঞান হওয়া (সিনকোপ) অথবা ঘূর্ণিরোগের (মাথা ঝিমঝিম করা) মত উপসর্গের অভিজ্ঞতা হতে পারে সাধারণতঃ রক্তচাপ মাত্রায় হ্রাস বা অবনতি কোনও আঘাত রক্তক্ষয় তরলক্ষয় অথবা কোনও ওষুধের কারণে হতে পারে নিম্ন রক্তচাপের উপসর্গগুলি যদি গুরুতর হয় সেক্ষেত্রে একটা পুঙ্ক্ষানুপুঙ্ক্ষ মূল্যায়ন এবং অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসার জন্য একজন ডাক্তারকে দেখানোই ভাল নিম্ন রক্তচাপের চিকিৎসা হচ্ছে প্রধানতঃ লবণ এবং চিনির দ্রবণ বা তরল গ্রহণের পরিমাণ বাড়ানো যদি কোনও অন্তর্নিহিত সমস্যা থাকে যা নিম্ন রক্তচাপ ঘটাচ্ছে সেই অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসা সাধারণতঃ রক্তচাপকে স্বভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনে ভালভাইটিস হল নারী যৌনাঙ্গের অংশে উপস্থিত যোনিকে ঢেকে রাখা চামড়ার ভাঁজযুক্ত ছোটো আস্তরণ ভালভা বা যোনিদ্বারের প্রদাহ এটি কোন রোগ নয় বরং এটি শরীরের অন্তর্নিহিত বিভিন্ন সম্ভাব্য সমস্যার একটি উপসর্গ ভালভাইটিসের সাথে যুক্ত চিকিৎসাগত লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হল যোনিমুখের অঞ্চলে লালচেভাব ব্যথাভাব এবং ফোলাভাব তীব্র চুলকানি স্বচ্ছ তরলপূর্ণ যন্ত্রণাদায়ক ফোস্কা যোনিদ্বারের উপরে আঁশের মতো এবং পুরু সাদা ছোপ যোনিদ্বারের সংবেদনশীলতা প্রস্রাবের সময় ব্যথা ভালভাইটিসের কারণ হতে পারে একাধিক যৌনসঙ্গী থাকা অসুরক্ষিত যৌনসঙ্গম গ্রুপ এ বিটাহিমোলাইটিক স্ট্রেপ্টোকক্কাস হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েঞ্জা শিগেলা এবং ক্যানডিড অ্যালবিকানসের দ্বারা ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ সুগন্ধি অথবা রঞ্জকযুক্ত টয়লেট পেপারের ব্যবহার চড়া গন্ধওয়ালা অথবা কড়া রাসানিক মেশানো সাবানের ব্যবহার কাপড় কাচার সাবানের অবশিষ্টাংশ অন্তর্বাসে রয়ে যাওয়া এবং যোনিদ্বারের সংস্পর্শে আসা ভ্যাজাইনাল স্প্রে/ স্পারমিসাইডস অমসৃণ প্রকৃতির নির্দিষ্ট কিছু পোশাকক্লোরিনযুক্ত জলে সাঁতারের মতো ক্রীড়ায় অংশ নেওয়া এগজিমা এবং সোরাইসিসের মতো চর্মরোগের ইতিহাস ভালভাইটিসের রোগ নির্ণায়ক মূল্যায়নের মধ্যে রয়েছে বিস্তারিত চিকিৎসাজনিত ইতিহাস শ্রোণী অঞ্চল ও যৌনাঙ্গের অংশের শারীরিক পরীক্ষা ল্যাবরেটরি টেস্টের মধ্যে অন্তর্ভুক্ত কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট (সিবিসি) মূত্র পরীক্ষা এবং প্যাপ স্মিয়ার টেস্ট (সারভিক্স বা জরায়ু গ্রীবার কোষের পরীক্ষার জন্য ব্যবহৃত) করা হয় পরিবর্তন অথবা প্রদাহের/সংক্রমণের উপস্থিতি সনাক্ত করার জন্য বয়স রোগের কারণ রোগের প্রবলতা এবং নির্দিষ্ট কিছু ওষুধের প্রতি সহন ক্ষমতা সহ বিভিন্ন ফ্যাক্টর বা কারকের উপর ভালভাইটিসের চিকিৎসা নির্ভর করে চিকিৎসায় কর্টিসোন ও টপিকাল অ্যান্টিফাংগাল এজেন্ট ব্যবহার সহ টপিকাল অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি এজেন্ট প্রয়োগ করা হয় অ্যাট্রোফিক ভ্যাজাইনাইটিসের ক্ষেত্রে যেখানে ভালভাইটিস একমাত্র রোগ নির্ণায়ক টপিকাল এস্ট্রেজেনের মিশ্রণও ব্যবহার করা যেতে পারেস্বযত্নের উপায়গুলির মধ্যে রয়েছে অস্বস্তি সৃষ্টিকারী উপাদান থেকে দূরে থাকা ব্যক্তিগত স্বচ্ছতা সুনিশ্চিত করা দিনে একাধিকবার যৌনাঙ্গ ধোয়া সুঁতির অন্তর্বাস পরা এবং আক্রান্ত স্থানটি শুকনো রাখা জরুরি লঘু্প্রকারের সাবান ব্যবহার সুগন্ধিত/ রঞ্জকযুক্ত টয়লেট পেপার ব্যবহার এড়ানো এবং যৌনাঙ্গ সামনে থেকে পিছনের দিক পর্যন্ত মোছানফোম জেলি ইত্যাদিক মতো বাহ্যিক উত্তেজক এবং রাসয়নিকের ব্যবহার এড়িয়ে চলা শুধুমাত্র সুতির জামাকাপড় এবং অন্তর্বাস ব্যবহার করা ক্লোরিন মেশানো সুইমিং পুলের জলের সংস্পর্শে দীর্ঘক্ষণ না থাকা যখন শরীরের স্বাস্থ্যবান কোষগুলোতে ভাইরাস আক্রমণ করে এবং নিজেদের সংখ্যাবৃদ্ধি করে তখন ভাইরাস ইনফেকশন হয় এই ভাইরাস স্বাস্থ্যবান কোষগুলোর ক্ষতি করতে পারে পরিবর্তন করতে পারে বা এমনকি মেরেও ফেলতে পারে এবং যদি আপনার এই ভাইরাসগুলির সাথে লড়াই করার জন্য শক্তিশালী প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা না থাকে তবে এটা আপনাকে সহজেই অসুস্থ করতে পারে সাধারণত যকৃৎ শ্বাসনালী এবং রক্ত এই ভাইরাসের দ্বারা আক্রান্ত হয় কিছু কিছু ভাইরাস মারাত্বক অসুস্থতা ঘটায় যেমন ইবোলা এবং স্মলপক্স ভাইরাল ইনফেকশনের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো হল পেশীতে ব্যথা হাঁচি সর্দি জ্বর কাশি গলায় ক্ষত ক্লান্তি মাথাব্যথাভাইরাল ইনফেকশনের লক্ষণ ও উপসর্গগুলো যে ভাইরাস ইনফেকশন সৃষ্টি করেছে তার ধরনের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয় ভাইরাল ইনফেকশনের কারণগুলো হলএকজন অসুস্থ ব্যক্তির হাঁচি বা কাশি থেকে ইনফেকশন ছড়িয়ে পড়েএকজন অসুস্থ ব্যক্তির হাত বা টিস্যু জামাকাপড় ইত্যাদি ব্যবহৃত জিনিসগুলির সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমেমলের মত দূষিত পদার্থের সংস্পর্শের মাধ্যমেন্যাপিস টয়লেটের হাতল খেলনা এবং কলের মত দূষিত জিনিসের সাহায্যে ইনফেকশনের সাথে পরোক্ষ যোগাযোগের মাধ্যমেদূষিত জল অথবা খাবার গ্রহণের মাধ্যমেহাইপোডারমিক সুঁচ বা যৌনমিলনের দ্বারা সংক্রামিত ব্যক্তির শরীরের তরল পদার্থের সংস্পর্শে এসেসংক্রামিত পোকামাকড় বা পশুর কামড়ের মাধ্যমেধূমপান মদ্যপান এবং ড্রাগস সেবনের মত অভ্যাসগুলো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে দেয় একটা ইমিউনোগ্লোবুলিন রক্তপরীক্ষার দ্বারা ভাইরাল ইনফেকশন নির্ণয় করা হয় পরীক্ষাতে বিশেষ ইমিউনোগ্লোবুলিনের মাত্রা পরিমাপ করা হয় আইজিজি আইজিএম এবং আইজিএবেশীরভাগ ভাইরাল ইনফেকশনে আক্রান্ত রোগীদের বিশ্রাম নিতে ও প্রচুর পরিমানে জল খেতে বলা হয় চিকিৎসক উপসর্গগুলির থেকে মুক্তি পেতে প্যারাসিটামল বা অ্যাস্পিরিন নিতে বলতে পারেন ইনফ্লুয়েঞ্জার মত কিছু ইনফেকশনের জন্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দিতে পারেন একটি ভাইরাল ইনফেকশনের জন্য অ্যান্টিবায়োটিকগুলির পরামর্শ দিতে পারেন তবে এগুলি ভাইরাল রোগগুলির বিরুদ্ধে অনেক বেশি সুরক্ষা প্রদান করে না ভার্টিগো মাথা ঘোড়া ভারসাম্য হারানো বা বিচলিত হওয়ার একটি সংবেদন যখন মোটর সংবেদন প্রভাবিত হয় তখন ভার্টিগো হয়ে থাকে এটি কোনো গুরুতর অন্তর্নিহিত রোগ বা ব্যাধির সাথে যুক্ত থাকতে পারে যা ভারসাম্য প্রোপ্রিয়োসেপশন বা দৃষ্টির সংবেদনশীল ক্রিয়াকলাপকে প্রভাবিত করে যেসব ব্যক্তির ভার্টিগো থাকে তারা মাথা ঘোড়া এবং মাথা ঘুরে পড়ে যাওয়ার সংবেদন অনুভব করেন ভার্টিগোর সঙ্গে যুক্ত প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হল টিনিটাস (কানের মধ্যে বোঁ বোঁ করা) শ্রবণশক্তি হারানো মাথা ঘোড়ার সময় বমি বমি ভাব শ্বাস প্রশ্বাসের ধরন এবং হৃদস্পন্দনের পরিবর্তন ঘাম হওয়া হাঁটতে না পারা সতর্কতায় পরিবর্তন চোখের নড়াচড়ায় অস্বাভাবিকতা দ্বিগুন দেখা মুখে প্যারালাইসিস কথা বলতে সমস্যা হাত অথবা পায়ে দুর্বলতা নীচে দেওয়া যেকোন অবস্থার কারণে ভার্টিগো হতে পারেডায়াবেটিস মেলিটাসঅ্যাথেরোস্ক্লেরোসিসখিঁচুনিমেনিয়ারের রোগরক্ত নালীর ব্যাধি মস্তিষ্কের বৈদ্যুতিক কার্যকলাপ পরিমাপ করার জন্য ডাক্তার মস্তিষ্কের একটি কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি (সিটি) স্ক্যান এবং ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) ইলেক্ট্রোনিস্টাগমোগ্রাফি (চোখের গতিবিধির পরিমাপ) রক্ত পরীক্ষা এবং একটি ইলেক্ট্রোএন্সেফ্যালোগ্রাম (ইইজি) করার পরামর্শ দিতে পারেন চিকিৎসক ডায়াবেটিস হৃদ রোগ বা অন্য কোনো ব্যাধি ভার্টিগোর কারণ হয়ে উঠছে কিনা খুঁজে বার করার জন্য চিকিৎসা ইতিহাস খুঁটিয়ে দেখতে পারেনকারণ নির্ধারিত হওয়া পর ভার্টিগোর চিকিৎসা শুরু করা হয় ভার্টিগোর জন্য যে সাধারণ চিকিৎসা পদ্ধতিগুলির পরামর্শ দেওয়া হয় সেগুলি হল উদ্বেগ না হওয়ার ওষুধ পেশীর রিলাক্সেন্টস গেইট (হাঁটার পদ্ধতি) স্থির রাখার জন্য ব্যায়াম খাপ খাওয়ানোর জন্য ব্যায়াম সংবেদনশীল সংগঠনর জন্য প্রশিক্ষণ স্থিতিশীল বা প্রগতিশীল ভারসাম্য বজায় রাখার ব্যায়াম ভারসাম্য ভালো করতে সাহায্য করে কানালিথ রিপোজিশনিং ট্রিটমেন্ট (সিআরটি/CRT) এই চিকিৎসাটি সবচেয়ে সাধারণ প্রকার ভার্টিগোর (বিনাইন প্যারক্সিস্মল পজিশনাল ভার্টিগো) জন্য দেওয়া হয় এরোবিক কন্ডিশনিং একটি পদ্ধতি যেখানে একটানা ছন্দোবদ্ধ গতিবিধি ফুসফুস এবং হৃদযন্ত্রের পেশীগুলিতে কার্যকরভাবে রক্ত পাম্প করতে সহায়তা করে যা পেশী এবং অঙ্গগুলিতে বেশি পরিমাণ অক্সিজেনের সরবরাহ হচ্ছে কিনা তা নিশ্চিত করে শুক্রানু নালীর পেম্পিনিফর্ম প্লেক্সাস শিরার (একটি নালী যা পুরুষের অণ্ডকোষকে ধরে রাখে) মধ্যে ফুলে যাওয়াকে ভ্যারিকোসিল বলা হয় 100 জন পুরুষের মধ্যে প্রত্যেক 1015 জনের উপর ভ্যারিকোসিলের প্রভাব পড়ে যা পায়ের শিরায় হওয়া ভ্যারিকোসের মতো ভ্যারিকোসিলে সাধারণত দেখতে পাওয়া লক্ষণ ও উপসর্গগুলি হলঃ অস্বস্তি সৃষ্টি মৃদু ব্যথা স্ক্রটামের শিরার বৃদ্ধি বা মচকে যাওয়া ব্যথা বিহীন টেস্টিকুলার লাম্প স্ক্রটাল ফুলে যাওয়া বা স্ফিত হওয়া বন্ধ্যাত্ব শুক্রানুর সংখ্যা কম হওয়া বিরলভাবে কোন উপসর্গ দেখা যায় না ভ্যারিকোসিলে প্রধানত শিরার ভাল্বটি ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার জন্য স্পারমেটিক কর্ডের সাথে অল্প রক্ত সঞ্চালিত হয়যার ফলে শিরাটি ফুলে যায় ও বড় হয়ে যায় কিডনিতে টিউমারের মতো অবস্থা দেখা দিলেও শিরায় রক্ত প্রাবাহিত হওয়ার সময় বাধা সৃষ্টি হয় চিকিৎসক উপসর্গগুলির সম্পূর্ণ ইতিহাস গ্রহন করেন ও কুঁচকির অঞ্চলটি ভালোভাবে পরীক্ষা করেন যার মধ্যে রয়েছে স্ক্রটাম এবং টেষ্টিকেল এবং দেখেন যে স্পারমেটিক কর্ডএ কোনও পাকানো শিরা আছে কিনা এক্ষত্রে নীচে শুয়ে থাকা অবস্থায়এটি দেখা যায় না আবার পরীক্ষার সময় টেস্টিক্যালের প্রতিটি সাইড আলাদাভাবে দেখা হয় কারণ দুদিকের টেষ্টিকেলের মাপ আলাদা হয়ভালসালভা ম্যানুএভারটি চিকিসকের দ্বারা সঞ্চালন করা হয়যতক্ষণ না চিকিৎসক স্ক্রটামটি অনুভব করেন ততক্ষন আপনাকে গভির নিশ্বাস গ্রহন করে সেটি ধরে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়চিকিৎসক স্ক্রটামের টেস্টিক্যালের এবং কিডনির আলট্রাসাউনড এর পরামর্শ দিতে পারেনযতক্ষণ না ভ্যারিকোসিলে ব্যথা প্রজনন ও টেস্টিক্যালের বৃদ্ধির পরিবর্তন জনিত সমস্যা দেখা দেয় (বাদিকের অংশটি ডান দিকের তুলনায় কম বৃদ্ধি পাওয়া) ততক্ষন এর চিকিৎসা করা যায় নাঅস্বস্তি দূর করতে জক সটরাপ বা আরামদায়ক অন্তরবাস ব্যবহার করা উচিত ভ্যারিকোসিল টি ঠিক করতে ভ্যারিকোসিলেকটোমি পদ্ধতিতে অস্ত্র প্রচার করা হয়ভ্যারিকোসিল এমবিলাইজেশন একটি অন্যতম অস্ত্রপ্রচার পদ্ধতিপারকুটেনাস এমোবিলাইজেশন পদ্ধতি ব্যবহারব্যথা ও ফোলাভাব কমাতে সাহায্যকারী কেবল মাত্র (অ্যাসিটামিনফেন ইবুফরফেন) ব্যথানাশক ওষুধ ব্যবহার করা যেতে পারে ভ্যাজাইনাল ক্যান্সার (যোনি ক্যান্সার) মহিলাদের জননতন্ত্রের একটি বিরল ধরনের ক্যান্সার যা সব ধরনের ক্যান্সারের তুলনায় শতকরা 02 এরও কম হয় সাধারণত এটি 60 বছর বয়সের উর্দ্ধে মহিলাদের মধ্যে দেখা যায় যখন যৌনমিলন বন্ধ হয়ে যায় এই ক্যান্সারটি ভ্যাজাইনা বা যোনির মধ্যে দেখা যায় যখন স্বাভাবিক স্বাস্থ্যবান কোষের মধ্যে পরিবর্তন হয় এবং সেটি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বড় হয়ে টিউমারের আকার নেয় সবথেকে সাধারণ ধরন হল স্কুয়ামাস কোষ কার্সিনোমা যেটি গ্রন্থিতে শুরু হয় সেটি অ্যাডেনোকার্সিনোমা নামে পরিচিত কানেক্টিভ কার্সিনোমাটি প্রচণ্ড বিরল এবং সেটি সার্কোমা নামে পরিচিত শুরুতেই উপসর্গগুলি লক্ষ্য করা যায়না যদিও একজন মানুষ যে লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি লক্ষ্য করতে পারেন সেগুলি হলরজোবন্ধের সময় এবং পরে যোনি থেকে অস্বাভাবিক রক্তপাতপ্রস্রাব করার সময় যন্ত্রণাযৌনমিলন করার সময় যন্ত্রণাপেলভিক অঞ্চলে যন্ত্রণাযোনিতে মাংসপিণ্ডবাজে ধরনের যোনি স্রাব বা রক্তের ছোপযুক্ত যোনি স্রাবযোনিতে চুলকানিপিঠে ব্যথাপায়ে ব্যথাপা ফুলে যাওয়াকোষ্ঠকাঠিন্য ভ্যাজাইনাল ক্যান্সারের (যোনি ক্যান্সার) সঠিক কারণ জানা যায়নি কিন্তু কিছু ঝুঁকির কারণ আছে যার কারণে ক্যান্সারের বৃদ্ধি হতে পারে যেমনবয়স বয়স বাড়ার সাথে সাথে এর ঝুঁকিও বাড়ে এটা সাধারণত 60 বছর বয়সের উর্দ্ধের মহিলাদের মধ্যে দেখা যায়হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভি/HPV সংক্রমণ)ডাইথাইলস্টিলবেস্টরাল (ডিইএস/DES) একটি ওষুধ যা প্রথম তিনমাস কালে গর্ভপাত রোধ করেআগের কোনও রেডিয়েশন থেরাপিসার্ভাইকাল ক্যান্সারহিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) সংক্রমণসিস্টেমিক লুপাস এরিথিমেটোসাস (এসএলই/SLE)ধূমপানঅ্যালকোহল যখন উপরে উল্লিখিত কোনও উপসর্গ বা কারণ দেখা যায় তখন যত তাড়াতাড়ি সম্ভব চিকিত্‍সকে দেখানোই ভাল চিকিত্‍সক সম্পূর্ণ চিকিত্‍সার ইতিহাস জিজ্ঞাসা করবেন এবং উপসর্গগুলিকে নিয়ে আলোচনা করবেন ও শারীরিক পরীক্ষা করবেন যার মধ্যে রয়েছে পেলভিক পরীক্ষা এবং পিএপি স্মিয়ার পরীক্ষা অন্যান্য যে পরীক্ষাগুলি করা হতে পারে সেগুলি হলকল্পোস্কোপি অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে পরীক্ষা করার জন্য যোনি থেকে একটা টিস্যুর নমুনা নেওয়া হয়বায়োপসি যখন অন্যান্য পরীক্ষাগুলি ক্যান্সারের ইঙ্গিত দেয় তখন বায়োপসিই হল একমাত্র নির্ধারক পরীক্ষা যা এই নির্ণয়কে নিশ্চিত করতে পারেবুকের এক্সরে ক্যান্সার ফুসফুস অবধি ছড়িয়েছে কিনা তা দেখার জন্য এটা করা হয়পেলভিস বা শ্রোণীর এবং তলপেটের আল্ট্রাসাউন্ড সোনোগ্রাফি (ইউএসজি/USG)কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি (সিটি/CT স্ক্যান)ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই/MRI)পসিট্রন এমিশন টোমোগ্রাফি (পিইটি স্ক্যান) রেডিওঅ্যাকক্টিভ সুগারের মাধ্যমে ম্যালিগন্যান্ট টিউমার সনাক্ত করার জন্য এটা করা হয়সিস্টোস্কোপি মূত্রস্থলী এবং মূত্রনালীর ভিতরে দেখার জন্যইউরেটেরস্কোপি ইউরেটার্সের ভিতরে দেখার জন্যপ্রক্টোস্কোপি রেক্টাম বা মলদ্বারের ভিতরে দেখার জন্যভ্যাজাইনাল ক্যান্সারের (যোনি ক্যান্সার) চিকিৎসার জন্য তিন পর্যায়ের চিকিত্‍সা উপলব্ধ আছেসার্জারিলেজার সার্জারি লেজার বীমের সাহায্যে টিউমারটি কাটা হয়ওয়াইড লোকাল এক্সিজন ক্যান্সারের ক্ষতর পাশাপাশি তার চারপাশের কিছু সাস্থ্যবান টিস্যুও কেটে বাদ দেওয়া হয়ভ্যাজাইনেক্টমি যোনি বাদ দেওয়া হয়সম্পূর্ণ হিস্টেরেক্টমি এতে জরায়ু এবং জরায়ুর পথ উভয়ই বাদ দেওয়া হয়রেডিয়েশন থেরাপি উচ্চ শক্তিযুক্ত এক্স রে বা অন্য রেডিওঅ্যাকটিভ বস্তু ব্যবহার করা হয়কেমোথেরাপি ওষুধ ব্যবহার করে ক্যান্সারের কোষগুলিকে মেরে বা কোষগুলির বিভক্ত হওয়াকে থামিয়ে ক্যান্সারের বৃদ্ধিকে আটকানো হয়বেশীরভাগ চিকিত্‍সারই পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে যেমন বিভিন্ন ধরনের যন্ত্রণা এবং অন্যান্য উপসর্গগুলিতে অস্বস্তি বোধ করা বমি বমি ভাব খিদে কমে যাওয়া ডায়রিয়া বমি হওয়া চুল পড়া মানসিক অবসাদ মূত্রস্থলী বা প্রস্রাবের উপর নিয়ন্ত্রণ কমে যাওয়ার ফলে অনভিপ্রেত ভাবে প্রস্রাব হয়ে যাওয়ার সমস্যাকে বলে প্রস্রাবে অসংযম বা প্রস্রাব ধারণে অক্ষমতা এটি মূলত বয়স্কদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় বিশেষত মহিলাদের মধ্যে বয়স বাড়ার সাথে সাথে প্রস্রাব অসংযম ঘটার সম্ভাবনাও বাড়তে থাকে মূত্রথলির স্ফিঙ্কটার পেশীগুলি দুর্বল হয়ে যাওয়ার ফলে মূত্রের প্রবাহ নিয়ন্ত্রণে অক্ষম হয়ে পড়লে এই সমস্যাটির সৃষ্টি হয় এটি বিভিন্ন প্রকৃতির হতে পারে যেমন স্ট্রেস আর্জ ওভারফ্লো মিক্সড ফাংশন এবং সম্পূর্ণ অসংযম এই রোগের সবথেকে পরিচিত কয়েকটি লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হলঘনঘন প্রস্রাব পাওয়াবিছানায় প্রস্রাব হয়ে যাওয়াতলপেটে চাপের অনুভূতিজোরে হাসি বা কাশির সময় প্রস্রাব বেরিয়ে আসাফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাবসম্পূর্ণভাবে প্রস্রাব না হওয়ার অনুভূতি প্রস্রাব অসংযম বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমনমূত্রথলির আস্তরণের প্রদাহস্ট্রোকপ্রস্টেট জড়িত থাকলেকিডনি বা মূত্রথলিতে পাথর হওয়াকোষ্ঠকাঠিন্যটিউমার যেটি মূত্রথলিতে চাপ সৃষ্টি করেমদ্যপানমূত্রনালির সংক্রমণ বা ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই)উত্তেজনা প্রশমনের ওষুধঘুমের ওষুধপেশী শিথিল করার ওষুধভারী বস্তু বহনমাল্টিপল সক্লেরোসিস জাতীয় স্নায়ুরোগঅস্ত্রোপচার বা আঘাতের ফলে মূত্রথলি নিয়ন্ত্রণকারী স্নায়ুগুলির ক্ষতিঅবসাদ (ডিপ্রেশন) বা উদ্বেগ (এংজাইটি) রোগীর বিস্তারিত ইতিহাস সংগ্রহের পর চিকিৎসক শরীরে উপস্থিত যেকোন সম্ভাব্য অস্বাভাবিকত্ব খুঁজতে শারীরিক পরীক্ষা করে থাকেন যে পরীক্ষাগুলি করা হয় তার কয়েকটি নিচে দেওয়া হলইউরিন্যালিসিস – মাইক্রোস্কোপিক এবং কালচারপোস্ট ভয়েড রেসিডিউয়াল টেস্ট (পিভিআর) – প্রস্রাবের পর মূত্রথলিতে অবশিষ্ট মূত্রের পরিমাণ জানতে সাহায্য করেঅটোইমিউন এন্টিবডি এবং ইত্যাদি খুঁজতে রক্ত পরীক্ষাসিস্টোগ্রাম – এটি একপ্রকার এক্সরে যা মূত্রথলির উপর করা হয়পেলভিক আল্ট্রাসাউন্ডইউরোডায়নামিক টেস্টিং – মূত্রথলি ও তার স্ফিঙ্কটার পেশিগুলি কতটা চাপ সহ্য করতে পারে সেটি এই পরীক্ষার সাহায্যে নির্ণয় করা হয়সিস্টোস্কোপিরোগটি নির্ণয়ের পরে এর চিকিৎসার জন্য বিভিন্ন পদ্ধতি অবলম্বন করা হয়ে থাকে যেমন প্রস্রাব সংগ্রহ করার জন্য ইউরিন ড্রেনেজ ব্যাগ ব্যবহার করা যেতে পারেপ্যাড প্যান্টি লাইনার অ্যাডাল্ট ডায়পার প্রভৃতি পণ্য ব্যবহার করা যেতে পারে যেগুলি তরল শোষণ করে নেয়প্রস্রাব চুঁইয়ে বেরোনোর ফলে ত্বকে সৃষ্ট লালভাব ও ফুসকুড়ি কমানোর জন্য অ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল ক্লেনসার ব্যবহার করা হয়ইন্টারমিটেন্ট ক্যাথেটারাইজেশন – মূত্রনালির মধ্যে দিয়ে ক্যাথেটার প্রবেশ করিয়ে মূত্র সংগ্রহ করা হয় ক্যাথেটার হল একটি নমনীয় নালী যা মূত্রথলিতে প্রবেশ করানো হয় এগুলি লেটেক্স দিয়ে তৈরি হয় এবং এর উপর টেফ্লন বা সিলিকনের আবরণ থাকে ক্যাথেটার প্রবেশ করানোর পর একটি বেলুন ফুলিয়ে দেওয়া হয় যাতে ক্যাথেটারটি খুলে না যায়পুরুষদের ক্ষেত্রে যৌনাঙ্গে কন্ডোম বা টেক্সাস ক্যাথেটার প্রভৃতি বহিঃস্থ সংগ্রাহক ব্যবস্থা ব্যবহার করা হয়টয়লেটের বিকল্প হিসেবে বেডসাইড কমোড বা কমোড সিট বেড প্যান ও ইউরিনাল ব্যবহার করা যেতে পারেকেগেল এক্সারসাইজ জাতীয় শ্রোর্ণীপেশীর ব্যায়াম এই সমস্যায় সাহায্য করতে পারেটাইমড ভয়েডিং – এই প্রক্রিয়ায় একটি নির্দিষ্ট সময় অন্তর রোগীকে প্রস্রাব করানো হয় যা মূত্রথলির নিয়ন্ত্রণ বজায় রাখতে সাহায্য করেবায়োফিডব্যাক – এর মাধ্যমে রোগী নিজের দেহসংকেত সম্পর্কে সচেতন হতে শেখে এই প্রক্রিয়াটি মূত্রথলি ও মূত্রনালির পেশীর উপর রোগীর নিয়ন্ত্রণ ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করেকফি মদ ও তামাকের ব্যবহার সম্পূর্ণ বন্ধ করে দেওয়া উচিত ইউরেথ্রার প্রদাহ জনিত অবস্থাকে ইউরেথ্রাইটিস বলে ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণের কারণেই এটি বেশি হয় ইউরিনারি ট্র্যাক্ট ইনফেকশন (ইউটিআই)এর থেকে এটি আলাদা তাতে মূত্রাশয় থেকে শুরু করে মূত্রনালী পর্যন্ত মূত্র নির্গমন পথের যে কোন অংশ প্রভাবিত হতে পারে উভয় রোগের লক্ষণ একই রকমের কিন্তু চিকিৎসা পদ্ধতি আলাদা ইউরেথ্রাইটিস সব বয়সের ব্যক্তিদেরই প্রভাবিত করে কিন্তু পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের হওয়ার ঝুঁকি বেশি কিছু সাধারণ লক্ষণ এবং উপসর্গ হলপ্রস্রাবের সময় জ্বালাভাবপ্রস্রাবের সময় ব্যথাবারবার মূত্রত্যাগতলপেটে এবং শ্রোণীতে ব্যথাজ্বরফোলাভাবযৌনসঙ্গমের সময় ব্যথা করামহিলাদের ক্ষেত্রে যোনির স্রাবপুরুষদের ক্ষেত্রে লিঙ্গের স্রাবপুরুষদের ক্ষেত্রে বীর্য অথবা প্রস্রাবে রক্তপুরুষদের ক্ষেত্রে লিঙ্গে চুলকানিপুরুষদের ক্ষেত্রে যন্ত্রণাদায়ক বীর্যপাতমহিলাদের ক্ষেত্রে লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি ততটা স্পষ্ট নাও হতে পারে ইউরেথ্রাইটিস বিভিন্ন কারণে হতে পারে যেমনআঘাতশুক্রাণুনাশক অথবা গর্ভনিরোধক জেলি ও ফোমব্যাক্টেরিয়ার কারণে মূত্রাশয় এবং কিডনির সংক্রমণঅ্যাডিনোভাইরাসট্রাইকোমোনাস ভ্যাজিনালিসএশেরিকিয়া কোলাইএর মতো ইউরোপ্যাথোজেন ফোলাভাব অথবা স্রাব বেরনোর মতো সম্ভাব্য অস্বাভাবিকতার চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষা করেন চিকিৎসা জনিত ইতিহাসের বিশদ তথ্য নেওয়ার পাশাপাশি যে সমস্ত পরীক্ষা করা হয়ইউরেথ্রার পরীক্ষাসোয়্যাব প্রবেশ করানো এবং সংগ্রহ করা নমুনা অণুবীক্ষণ যন্ত্রের তলায় পর্যবেক্ষণসিস্টোস্কোপি – মূত্রাশয়ে ক্যামেরাসহ টিউব প্রবেশ করিয়ে অস্বাভাবিকতা খোঁজা হয়প্রস্রাব পরীক্ষাকমপ্লিট ব্লাড কাউন্টযৌন সংক্রমিত রোগ যাচাইয়ে নির্দিষ্ট টেস্টমহিলাদের ক্ষেত্রে শ্রোণীর আলট্রাসাউন্ডরোগ নির্ণয়ের পর রোগীর চিকিৎসা বিভিন্ন পদ্ধতিতে করা হয় যেমনব্যাক্টেরিয়া ঘটিত সংক্রমণের জন্য যথাযথ অ্যান্টিবায়োটিকের পরামর্শব্যথা নিয়ন্ত্রণের জন্য স্টেরয়েডবিহীন প্রদাহরোধী ওষুধ (এনএসএআইডিএস) ব্যবহার করা হয়ক্র্যানবেরি জুস সেবন করা যেতে পারে এর উচ্চ ভিটামিন সি এর মাত্রা প্রদাহ দ্রুত সারাতে সহায়ক ইউরেথ্রা হল একটা টিউব বা নালী যা মূত্রকে শরীরের বাইরে বের করতে সাহায্য করে ইউরেথ্রাল সিন্ড্রোম হল কোনওরকম সংক্রমণ ছাড়াই ইউরেথ্রার প্রদাহ অথবা অস্বস্তিবোধ এটি সিম্পটোম্যাটিক অ্যাব্যাক্টেরিইউরিয়া নামেও পরিচিত এর সঙ্গে সংক্রমণের কোনও যোগ নেই সব বয়সের ব্যক্তিরাই রোগের এই অবস্থার প্রতি অতিসংবেদনশীল কিন্তু মহিলাদেরই এটি বেশি হয় লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি অনেকটা ইউরেথ্রাইটিসের মতোই দুটি রোগেই মূত্রনালীতে অস্বস্তি হয় ইউরেথ্রাইটিস হয় ব্যাক্টেরিয়াল এবং ভাইরাল সংক্রমণের জন্য কিন্তু ইউরেথ্রাল সিন্ড্রোমের কারণ ততটা স্পষ্ট নয় কিছু সাধারণ লক্ষণ এবং উপসর্গ হলপ্রস্রাবের সময় ব্যথাবারবার প্রস্রাব পাওয়াতলপেটে ব্যথাপ্রস্রাবে জ্বালাপ্রস্রাবের তাড়নাকুঁচকিতে ফোলা ভাবযৌনসঙ্গমের সময় ব্যথাবিশেষভাবে পুরুষদের মধ্যে দেখা দেওয়া কিছু লক্ষণঅন্ডকোষ ফুলে ওঠাবীর্যে রক্তলিঙ্গের স্রাববীর্য বের হওয়ার সময় ব্যথা রোগের স্পষ্ট প্রমাণের অভাবে ইউরেথ্রাল সিন্ড্রোমের প্রকৃত কারণ অজানা কিন্তু কিছু সম্ভাব্য কারণ হলমূত্রনালীর চোটকেমোথেরাপিরেডিয়েশনক্যাফিনপারফিউম সাবান স্যানিটারি ন্যাপকিন ইত্যাদির মতো সুগন্ধী দ্রব্যশুক্রাণু নাশক জেলিযৌন ক্রিয়াবাইক চড়াডায়াফ্রাম এবং ট্যাম্পন ব্যবহারভাইরাল অথবা ব্যক্টেরিয়াল সংক্রমণ চিকিৎসক শ্রোণীর অংশে সম্ভাব্য লক্ষণের জন্য শারীরিক পরীক্ষা করবেন রোগীর চিকিৎসাজনিত ইতিহাস সংগ্রহ করা হয় কিছু পরীক্ষাও করা হয়ইউরিনাল স্যাম্পেল টেস্ট এবং ইউরেথ্রাল সোয়্যাব টেস্টশ্রোণী অংশের আল্ট্রাসাউন্ডইউরেথ্রোস্কোপি একটি পাতলা টিউবের সঙ্গে যুক্ত ক্যামেরার মূত্রনালীর ভিতরে প্রবেশ করানো হয়যৌন সংক্রমিত রোগের (এসটিডিস)র জন্য পরীক্ষারোগ নির্ণয়েরর পর বিভিন্ন পদ্ধতিতে রোগীর চিকিৎসা করা যায় যেমনসার্জারি – মূত্রনালী সঙ্কুচিত হয়ে গেলে তখন করা হয় এটি বাধা দূর করতে সহায়কসুগন্ধী সাবান দীর্ঘক্ষণ বাইক চড়া ইত্যাদি এড়িয়ে চলার মতো জীবনশৈলীতে কিছু পরিবর্তনস্টেরয়েডবিহীন প্রদাহরোধী ওষুধের মতো উপযুক্ত ওষুধ নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়দ্রুত সেরে ওঠা এবং রোগের পুনরাবৃত্তি রোধে ব্যক্তিগত পরিচ্ছন্নতা এবং শৌচকর্ম সংক্রান্ত স্বচ্ছতা অবলম্বন আবশ্যক ট্রাইকোমোনিয়াসিস হল এক ধরণের রোগ যা যৌন বাহিত এবং এটি প্রাথমিকভাবে পরজীবী সংক্রমণের কারণে ঘটে এই রোগ পুরুষের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং এটি বিশ্বের যে কোন অংশে খুবই সাধারণ ঘটনা কিছু ব্যক্তির মধ্যে বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এই রোগ কোন উপসর্গ প্রকাশ করতে পারে না এই কারণে এটি নির্ণয়ে বিলম্ব হতে পারে মহিলাদের মধ্যে ট্রাইকোমোনিয়াসিসের খুব সাধারণ উপসর্গগুলি হলযৌনাঙ্গ এলাকায় অস্বস্তি বা চুলকানিযোনির ফেনা স্রাব যা সবুজ বা হলদেটে হয়যোনি থেকে দুর্গন্ধযৌন মিলনের সময় অস্বস্তিমূত্রত্যাগের সময় সমস্যাতলপেটে ব্যথাপুরুষদের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলি নিম্নরূপ হতে পারেযৌনাঙ্গ এলাকায় জ্বালা অনুভবমূত্রত্যাগ বা বীর্যপাতের পর অস্বস্তিলিঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক স্রাব নির্গমণএই উপসর্গগুলি সংক্রামিত হওয়ার 5 থেকে 28 দিনের মধ্যে প্রকাশ পেতে পারেযদি চিকিৎসা না করা হয় এই রোগ হিউম্যান ইমিউনোডিফিশিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি) সংক্রামিত হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে ট্রাইকোমোনিয়াসিস প্রাথমিকভাবে পরজীবী ট্রাইকোমোনাস ভ্যাজিনালিসের সংক্রমণের কারণে ঘটেসংক্রমণ যৌন যোগাযোগের (যোনি মলদ্বারে বা মৌখিক যৌনমিলন) মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েএকাধিক যৌনসম্পর্কে জড়িত থাকা একজন ব্যক্তির এই সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে ট্রাইকোমোনিয়াসিস নির্ণয় করার জন্য ডাক্তার নীচে উল্লেখিত পরীক্ষাগুলির ব্যবস্থা করবেনপেলভিক বা শ্রোর্ণী পরীক্ষাপরীক্ষাগারে তরল নমুনার পরীক্ষামূত্র পরীক্ষামৌখিক অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগ করে এই রোগ সহজেই সারানো যায় যা শরীর থেকে পরজীবী জীবাণুকে নির্মূল করতে সহয়তা করেপুনরায় সংক্রমণের সম্ভবনা দূর করতে উভয় সঙ্গীরই ওষুধ গ্রহণ করা দরকারএসটিডি প্রতিরোধের একমাত্র উপায় হল নিরাপদ যৌন অভ্যাস এবং একাধিক যৌন সম্পর্ক থেকে বিরত থাকাকন্ডোমের ব্যবহার রোগটি সংক্রমণের ঝুঁকি কমাতে পারে কিন্তু এটি সম্পূর্ণ নির্মূল করে নাযৌন সম্পর্কে জড়িত থাকার সময় এবং এসটিডির ঝুঁকি এবং পূর্ববর্তী ইতিহাস নিয়ে আলোচনা করার সময় অবগত পছন্দগুলি তৈরী করা একটি সহায়ক প্রতিরোধক পরিমাপ হতে পারে ট্রমা (মানসিক আঘাত) হল একটি অবস্থা যা একাধিক পরিস্থিতি একটার পর একটা ঘটনার ফলে বা ক্ষতিকারক বা ভীতিকর ঘটনা যা একজন ব্যক্তি মানসিক বা শারীরিক ভাবে প্রত্যক্ষ করে তার ফলে হয় এই ঘটনা একজন ব্যক্তির সামাজিক মানসিক আবেগ শারীরিক কার্যকারিতা এবং সুস্থতার উপরে দীর্ঘস্থায়ী প্রতিকূল প্রভাব ফেলতে পারে একটি আঘাতমূলক ঘটনায় যে মানসিক প্রতিক্রিয়া যুক্ত থাকে তা হলস্মৃতিশক্তি এবং একাগ্রতা কমে যাওয়াঘটনা সম্পর্কে উদ্বিগ্ন চিন্তাবিভ্রান্তিঘটনার অংশ বারংবার স্মৃতিতে চলে আসাএকটি আঘাতমূলক ঘটনায় যে শারীরিক প্রতিক্রিয়া যুক্ত থাকে তা হলঘুম চক্রে ব্যাঘাতমাথা ঘোরা বমি বমি ভাব এবং বমি করামাথা ব্যাথাঅঝোরে ঘামাহৃদ কম্পন বৃদ্ধি পাওয়াএকটি আঘাতমূলক ঘটনায় যে আচরণগত প্রতিক্রিয়া যুক্ত থাকে তা হলখাওয়ার ইচ্ছার পরিবর্তনপ্রতিদিনের কাজে অনিয়মঘুমে সমস্যাআরোগ্যের সাথে সম্পর্কযুক্ত কাজের মধ্যে নিবিষ্ট হয়ে যায়সিগারেট মদ্যপান এবং কফি পানে বেশি অভ্যস্ত হয়ে পড়াঘটনা সম্পর্কে চিন্তাভাবনা বন্ধ করার অক্ষমতাঘটনার সাথে সম্পর্কিত যে কোন স্মৃতি এড়িয়ে যাওয়াএকটি আঘাতমূলক ঘটনায় যে অবেগ সংক্রান্ত প্রিতিক্রিয়া যুক্ত তা হলআতঙ্ক দুশ্চিন্তা এবং ভয়আবেগশূন্য অনুভূতিহতবম্ব অবস্থাবিভ্রান্তি এবং বিচ্ছিন্ন অনুভবমানুষের থেকে দূরে সরে থাকা এবং তাদের সাথে যোগাযোগ না রাখতে চাওয়াঘটনা বর্তমানেও হচ্ছে এবং চর্তুদিকে বিপদ রয়েছে এই ধরণের অনুভূতিঘটনা শেষের পরেও অবসাদ অনুভব করাঘটনা শেষ হওয়ার পরে হতাশ অনুভবহতাশ পর্যায়ে অপরাধবোধ বিষণ্ণতা এড়িয়ে যাওয়া এবং অতিরিক্ত সংবেদনশীলতা অনুভূতিগুলির অভিজ্ঞতা নীচে উল্লেখিত ঘটনাগুলির অভিজ্ঞতা একজন ব্যক্তির মধ্যে আঘাতমূলক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করতে পারেক্ষতিশারীরিক এবং যৌন নির্যাতনসামাজিক পারিবারিক কর্মক্ষেত্রে আক্রমণঅপরাধপ্রাকৃতিক দুর্যোগবঞ্চনা অনুভবআঘাতমূলক দুঃখচিকিৎসা পদ্ধতি আঘাত বা অসুস্থতা যখন একজন প্রাপ্তবয়স্কের মধ্যে এই সমস্ত উপসর্গগুলি অন্তত একমাসের বেশি সময়ের জন্য উপস্থিত থাকে তখন ট্রমা বা মানসিক আঘাত নির্ণয় কর হয়অন্তত দুটি প্রতিক্রিয়াশীলতা এবং উত্তেজনার উপসর্গ থাকবেঅন্তত একটি উপসর্গের দ্বিতীয়বার সম্মুখীন হওয়াকমপক্ষে দুটি মেজাজ এবং জ্ঞানের উপসর্গঅন্তত একটি উপসর্গ পরিত্যাগ করাট্রমা বা মানসিক আঘাতের চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয়বৌদ্ধিক আচরণগত থেরাপিএক্সপোজার থেরাপিবৌদ্ধিক বিকাশের পুনর্গঠনপদ্ধতিগতভাবে সংবেদনশীলতার অভাবের চিকিৎসাউদ্বেগ নিয়ন্ত্রণচাপ হ্রাস থেরাপিচোখের নড়াচড়ার সংবেদনশীলতা এবং পুনঃপ্রক্রিয়াঅ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস এবং অন্যান্য ওষুধ টরেট সিন্ড্রোম স্নায়ুতন্ত্রের একটি অবস্থা যার ফলে আক্রান্ত ব্যক্তি আচমকা এবং অনিচ্ছাকৃতভাবে অঙ্গসঞ্চালন অথবা আওয়াজ করতে থাকে এই আচমকা এবং অনিচ্ছাকৃত অঙ্গসঞ্চালন অথবা আওয়াজকে টিক্স বলে এবং এই সিন্ড্রোম মৃদু থেকে গুরুতর হতে পারে টরেট সিন্ড্রোমের দুটি প্রধান উপসর্গ হলো মোটর টিক এবং ভার্বাল টিকআচমকা এবং অনিচ্ছাকৃত অঙ্গসঞ্চালনকে মোটর টিক বলে মোটর টিকের অন্তর্ভুক্তচোখ পিটপিট করামুখ বিকৃতি করাআচমকা চোয়াল নাড়ামাথা ঝাঁকানোলাফানোকাঁধ ঝাঁকানোহঠাৎ মুখ খুলে যাওয়াহাত ঝাঁকিয়ে ওঠাব্যক্তির দ্বারা অনিচ্ছাকৃত আওয়াজ করাকে ভার্বাল টিক বলা হয় এই শব্দগুলির অর্থ অপ্রয়োজনীয় মনে হতে পারে এবং বেশিরভাগ সময়ই এই আওয়াজগুলিকে অপ্রাসঙ্গিক মনে হয় ভার্বল টিকের মধ্য়ে অন্তর্ভুক্তকিছু শোঁকার চেষ্টাবিড়বিড় করাচিৎকার করাঘোঁৎ ঘোঁৎ করাকিছু ক্ষেত্রে ভার্বাল টিকের মধ্যে কোনওরকম প্রতিজ্ঞাসূচক অথবা অন্যান্য কোনও অসামাজিক শব্দ আওড়ানো হতে পারে তবে এটা খুবই বিরলমনে রাখা দরকার যে টরেট সিনড্রোম অন্যান্য সমস্যার সঙ্গেও দেখা দিতে পারে যেমনঅবসেসিভকমপালসিভ ডিসঅর্ডারউদ্বিগ্নতাহতাশা টরেট সিনড্রোমের নির্দিষ্ট কারণ এখনও অজানা যদিও বেশিরভাগ চিকিৎসা গবেষণার মতে এই সিন্ড্রোমটি মস্তিষ্কের অংশ এবং জিনের কাঠামোগত পার্থক্যের সাথে যুক্ত যাদের পরিবারে এই রোগের ইতিহাস রয়েছে বংশগতভাবে সেসব ব্যক্তির এই রোগ হওয়ার ঝুঁকি বেশি থাকেএই রোগটি পুরুষদের মধ্যেই বেশি দেখা যায় আর তাই এটিকে লিঙ্গভিত্তিক ঝুঁকির কারণ হিসাবে ধরা যেতে পারেএটি কিভাবে নির্ণয় এবং চিকিৎসা করা হয়টরেট সিন্ড্রোম নির্ণয় করার জন্য নিম্নলিখিত অবস্থাগুলি থাকা জরুরিসংশ্লিষ্ট ব্যক্তির অন্তত দুটি মোটর টিক এবং একটি ভার্বাল টিক থাকতে হবেসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে অন্ততপক্ষে এই টিকগুলি গত এক বছর ধরে অনুভব করতে হবেএই টিকগুলির উপস্থিতি 18 বছর বয়েসের আগে দেখা দেওয়া উচিতএই উপসর্গগুলি যেন ওষুধ অথবা মাদকের মতো কোনও বাহ্যিক কারণে না দেখা দেয়টরেট সিনড্রোমের জন্য চিকিৎসা পদ্ধতি সীমিতযদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রে উপসর্গের দেখা দেওয়া ব্যক্তির দৈনন্দিন জীবনের স্বাভাবিক কাজকর্মে কোনওরকম ছাপ ফেলে না তাই সঠিক সমর্থন এবং নির্দেশনা পেলে ব্যক্তি খুব সহজেই নিজেকে সামলাতে সক্ষম হয়কিছু ক্ষেত্রে অন্যান্য রোগের সঙ্গে জড়িত উপসর্গগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করার জন্য ওষুধ দেওয়া হতে পারে টরেট সিন্ড্রোমের ব্যাপারে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ও তার পরিবারের সদস্যদের শিক্ষা প্রদানের পাশাপাশি থেরাপি এবং কাউন্সেলিং বেশ সহায়ক ভূমিকা নিতে পারে টেস্টোস্টেরনের অভাব এমন একটা অবস্থা যা সাধারণত বয়স্ক পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় কারণ টেস্টোস্টেরনের উৎপাদন প্রভাবিত হওয়ার ফলে এর ঘাটতি দেখা দেয় যুবকদের মধ্যে টেস্টোস্টেরনের অভাবের ফলে অন্যান্য জটিলতা দেখা দিতে পারে যেহেতু এটা বয়ঃসন্ধি ও শারীরিক পরিবর্তন প্রক্রিয়ার জন্য আবশ্যক এই অবস্থার লক্ষণ ও উপসর্গ বিভিন্ন বয়সের উপর নির্ভর করে ভিন্ন হয় টেস্টোস্টেরনের অভাবের কিছু সাধারণ লক্ষণ হলঅবিকশিত পুরুষ জননাঙ্গদাড়িগোঁফ ঠিকমতো না ওঠা এবং মাংসপেশীর দুর্বল বিকাশবয়ঃসন্ধির পর বাধাপ্রাপ্ত বিকাশপ্রাপ্তবয়স্কদের ক্ষেত্রে স্বল্প কামেচ্ছা ও যৌনক্রিয়ায় সমস্যার পাশাপাশি ক্রমাগত মেজাজ পরিবর্তন হতে থাকেপেশীর ক্ষমতা কমে যায়অস্টিওপোরোসিস টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের নিয়ন্ত্রণ টেস্টিস বা অন্ডকোষ ও মস্তিস্কের উপর নির্ভর করে কারণ মস্তিস্কই হরমোনের উৎপাদনকে নিয়ন্ত্রণ করে টেস্টোস্টেরনের অভাবের সবচেয়ে স্বাভাবিক কারণ হল বৃদ্ধাবস্থা অন্যান্য যেসব কারণে এই অবস্থা হয়পিটুইটারির হাইপোথ্যালামাস অথবা টেস্টিসের জিনগত সমস্যাওষুধের যথেচ্ছা ব্যবহারঅন্ডকোষে আঘাত অথবা ক্ষতি কামেচ্ছায় ঘাটতি এবং ঘনঘন মেজাজ পরিবর্তনের ক্ষেত্রে চিকিৎসক রক্তের নমুনা সংগ্রহ করে টেস্টোস্টেরন টেস্টের পরামর্শ দিতে পারেন পরীক্ষার ফলাফলে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য এই টেস্ট এক বা দুইদিনের মধ্যে পুনরায় করা হয় এই অবস্থার চিকিৎসা উপলব্ধ তবে এই রোগ পুরোপুরি সারে না এবং সময়ে সময়ে ওষুধ গ্রহণ আবশ্যক স্বাভাবিক মাত্রা ফেরানোর উদ্দেশে অনেক সময় টেস্টোস্টেরনের রিপ্লেসমেন্ট থেরাপির সাহায্য নেওয়া হয় টেস্টোস্টেরন জেল বা ইঞ্জেকশন নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হতে পারে অভাবের চিকিৎসা করতেতরুণদের ক্ষেত্রে টেস্টোস্টেরোন থেরাপি অনুপস্থিত গৌন যৌন বৈশিষ্ট্যকে সংশোধন করতে পারে তবে বেশি বয়সের পুরুষদের ক্ষেত্রে পুরোপুরি সন্তোষজনক ফল দেয় না টেস্টোস্টেরোনের অভাব যে কোনও প্রাপ্তবয়ষ্ক পুরুষের কাছেই একটা প্রতিদ্বন্দ্বিতামূলক অবস্থা কারণ এটি অন্ডকোষের বিকাশকে প্রভাবিত করে টেস্টিস বা অন্ডকোষ হল পুরুষ যৌনাঙ্গ যা স্ক্রোটাম (অন্ডথলি) নামে পরিচিত চামড়ার থলির ভিতরে থাকে এদের মূল কাজ হলো শুক্রাণু উৎপাদন ও টেস্টোস্টেরন হরমোন ক্ষরণ করা টেস্টিকুলার সোয়েলিং একটা যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা সরাসরি চোটআঘাত সংক্রমণ অথবা অন্ডকোষে মোচড়ের মতো নানান অবস্থার কারণে এটি হতে পারে অন্ডকোষের ফোলাভাবকে কখনও অগ্রাহ্য করা উচিত নয় এবং অবিলম্বে চিকিৎসা পরিষেবা নেওয়া দরকার টেস্টিকুলার সোয়েলিং অন্ডথলিতে ভারিভাবের সঙ্গে প্রচণ্ড ব্যথা তৈরি করে কুঁচকির অংশে নিচের দিকে টান পড়ার সংবেদনের সঙ্গে জায়গাটা লাল হয়ে ওঠা এবং ক্রমাগত ভারিভাব অনুভূত হতে পারে কিছু পুরুষ বীর্যের সঙ্গে রক্তপাতও প্রত্যক্ষ করেন জ্বর প্রস্রাবের সময় ব্যথা ও অসুস্থতা অনুভব এমন কিছু উপসর্গ যা প্রদাহের সঙ্গে সংক্রমণ হলেও দেখা দেয় টেস্টিকুলার সোয়েলিং নানান কারণে হতে পারে সাধারণ কারণগুলি হলসরাসরি আঘাতযৌন সংক্রামক রোগের ফলে ব্যাক্টেরিয়া ঘটিত সংক্রমণঅর্কাইটিস যেটা হল অন্ডকোষের প্রদাহএপিডিডাইমাইটিস (অন্ডকোষ থেকে যে নালী বীর্য বহন করে তার প্রদাহ)ভাইরাল সংক্রমণ (সাধারণত মাম্পস ভাইরাসের কারণে হয়)টেস্টিকুলার টর্সন (অন্ডকোষ যন্ত্রণাদায়কভাবে মুচড়ে যাওয়া )টেস্টিকুলার ক্যান্সার রোগ নির্ণয় চিকিৎসা সংক্রান্ত ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার ওপর নির্ভর করে হয় যাতে আক্রান্ত অংশের পুঙ্খানুপুঙ্খ পরীক্ষার ওপর নজর দেওয়া হয় প্রস্টেটের কোনও ভূমিকা আছে কিনা তা দেখার জন্য চিকিৎসক মলাশয়ের পরীক্ষা করতে পারেন এর পাশাপাশি সংক্রমণ যাচাইয়ের জন্য রক্ত ও মূত্র পরীক্ষা করা হয় আল্ট্রাসাউন্ড অথবা কালার ডপলার টেস্ট ফোলাভাবের সঠিক প্রকৃতি এবং কারণ চিহ্নিত করতে সহায়ক ভূমিকা নেয়সোয়েলিং বা ফোলাভাবের অন্তর্নিহিত কারণের ওপর ভিত্তি করে চিকিৎসার ধরণ ভিন্ন হয় ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণের ক্ষেত্রে 1014 দিনের অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স দেওয়া হয় প্রয়োজন অনুযায়ী বেদনানাশক ওষুধ দেওয়া হয় প্রদাহরোধী ওষুধের সঙ্গে জ্বর হলে অ্যান্টিপাইরেটিক নেওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় যৌনক্রিয়ায় সক্রিয় পুরুষদের কন্ডোমের ব্যবহার অথবা উপসর্গমুক্ত হওয়া পর্যন্ত যৌনসংসর্গ এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয় নিজে যত্ন নেওয়ার মধ্যে রয়েছে বিশ্রাম স্ক্রোটাল সাপোর্ট ও রোজ 1520 মিনিট করে বরফের সেঁক দেওয়া টেস্টিক্যাল (অন্ডকোষ) হলো পুরুষদের জননাঙ্গ যা স্পার্ম বা শুক্রাণু উৎপাদন করে এবং টেস্টোস্টেরন নামক হরমোনটি ক্ষরণ করে টেস্টিকুলার ক্যান্সার একটি বিরল ক্যান্সারের ধরণ এবং এটি মূলত 1545 বছর বয়সের পুরুষদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় প্রাথমিক ভাবে এটি অন্ডকোষের উপর একটি যন্ত্রণাহীন মাংসপিণ্ডরূপে উপস্থিত হয় এই প্রকার ক্যান্সার সেরে যায় এবং চিকিৎসায় উচ্চ সাফল্যের হার দেখতে পাওয়া যায় অন্ডকোষ অঞ্চলে চাপের পরিবর্তন ও স্ফীতির কারণে এবং অতিরিক্ত টেস্টোস্টেরন উৎপাদনের ফলে টেস্টিকুলার ক্যান্সারের উপসর্গগুলি দেখা দেয় এগুলি হলএকটি বা দুটি টেস্টিক্যাল বা শুক্রাশয়েই মাংসপিন্ড অথবা ফোলাভাব সৃষ্টি হয়অণ্ডকোষ ভারী হওয়ার অনুভূতিঅন্ডকোষে তরলের সঞ্চয়অণ্ডকোষে ব্যথা বা অস্বস্তিশ্রোণী অঞ্চলে হালকা ব্যথাপিঠের তলভাগে যন্ত্রণাস্তনে সংবেদনশীলতা বা তা পরিবর্ধিত হওয়া টেস্টিকুলার ক্যান্সারের নিশ্চিত কোন কারণ পরিষ্কারভাবে জানা যায় না কিন্তু একাধিক প্রবণতা বা ঝুঁকির উপাদান আছে যাদের উপস্থিতি একজন ব্যক্তির মধ্যে এই রোগ সৃষ্টির সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে এই উপাদানগুলি হলটেস্টিক্যালের অস্বাভাবিক বিকাশ – ক্লাইনফেলটারস সিনড্রোম নামক জিনগত রোগে যেরকম শুক্রাশয়ের অস্বাভাবিক বা ক্ষীণ বিকাশ দেখতে পাওয়া যায় সেরকমভাবে শুক্রাশয়ের বিকাশ ঘটলে এই ক্যান্সার হয়ে থাকতে পারেঅনবতীর্ণ শুক্রাশয় (ক্রিপ্টরকিডিজম) – ভ্রূণাবস্থায় শুক্রাশয় তলপেট থেকে অণ্ডকোষের অবস্থানে নেমে আসে কিন্তু কিছুক্ষেত্রে এটি ঘটে না এবং শুক্রাশয় তলপেটেই থেকে যায়বংশগতভাবে শুক্রাশয়ের ক্যান্সারের দীর্ঘ ইতিহাস থাকলেবয়স – 1545 বছর বয়সসীমার পুরুষদের মধ্যে শুক্রাশয়ের ক্যান্সারের প্রবণতা বেশি দেখা যায় যথাযথ চিকিৎসাগত ইতিহাস সংগ্রহ ও তার সাথে শারীরিক পরীক্ষা টেস্টিকুলার ক্যান্সার নির্ণয়ে সাহায্য করে তবে নিশ্চিত হওয়ার জন্য এবং উপযুক্ত চিকিৎসাপদ্ধতি নির্বাচনের জন্য কয়েকটি নির্দিষ্ট পরীক্ষা করা অবশ্য প্রয়োজনীয় এই পরীক্ষাগুলি হলরক্ত পরীক্ষা – আলফাফেটোপ্রোটিন বিটা এইচসিজি এবং ল্যাকটেট ডিহাইড্রোজেনেসের মত টিউমার চিহ্নিতকারীরা শুক্রাশয়ের ক্যান্সার নির্ণয়ে সাহায্য করেসোনোগ্রাফি – অন্ডকোষ অঞ্চলের আলট্রাসোনোগ্রাফির মাধ্যমে ক্যান্সারের বিস্তৃতি ও মাংসপিন্ডটির প্রকৃতি নির্ধারণে সাহায্য করেসিটি স্ক্যান – এই পরীক্ষাটি সাধারণত রোগীর শরীরে ক্যান্সারের বিস্তৃতি জানতে সাহায্য করেহিস্টোপ্যাথলজি – টিউমারের মাংসপিন্ডটি অপসারণের পর সেটি মাইক্রোস্কোপের তলায় পরীক্ষার মাধ্যমে ক্যান্সারের প্রকৃতি জানা যায়ক্যান্সারের প্রকৃতি ও পর্যায়ের উপর নির্ভর করে এর চিকিৎসা পদ্ধতি নির্বাচন করা হয় কিছুক্ষেত্রে রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং নিজস্ব পছন্দও চিকিৎসাপদ্ধতি নির্বাচনে প্রভাব ফেলে এই রোগের বিভিন্ন চিকিৎসাগুলি হলঅস্ত্রোপচার (অর্কিডেক্টমি) – এর আদর্শ চিকিৎসা হল অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে আক্রান্ত শুক্রাশয় এবং লসিকা গ্রন্থির (লোকোরিজিওনাল নোড) অপসারণ এই প্রক্রিয়া সাধারণত ক্যান্সার নির্মূল করেরেডিয়েশন থেরাপি – এই প্রক্রিয়ায় উচ্চ শক্তির এক্সরে রশ্মির সাহায্যে ক্যান্সার কোষগুলিকে ধ্বংস করা হয় কিন্তু রেডিয়েশন থেরাপির একাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে এবং এটি শুধুমাত্র কয়েকটি নির্দিষ্ট প্রকৃতির ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই ব্যবহৃত হয়কেমোথেরাপি – কেমোথেরাপির ওষুধগুলি ক্যান্সার কোষগুলিকে নষ্ট করতে সাহায্য করে প্রায়শই অস্ত্রোপচারের পর অবশিষ্ট ক্যান্সার কোষগুলি ধ্বংস করার জন্য এই পদ্ধতি ব্যবহার করা হয় এটিরও একাধিক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে টেনশন হল আমাদের শরীরের পরিস্থিতি চাপ এবং জীবনের ঘটনাগুলির প্রতিক্রিয়া টেনশন এবং চাপের জন্য অবদানকারী উপাদানগুলি একজন ব্যক্তির থেকে অন্য ব্যক্তির মধ্যে আলাদা হয় পরিস্থিতির উপর সামান্য বা কোন নিয়ন্ত্রণ না থাকা অপ্রত্যাশিত বা নতুন কিছু নিয়ে কাজ করার সময় উদ্বেগ বোধ করার কারণে টেনশন হতে পারে দীর্ঘমেয়াদী টেনশন এবং চাপ উচ্চ রক্তচাপ স্থূলতা এবং ডায়াবেটিসের মত স্বাস্থ্য সমস্যাগুলি তৈরি করতে পারে টেনশনের সাথে যুক্ত প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হলঅনিদ্রানিজেকে মূল্যবান বলে মনে না করা বা নিজের প্রতি সম্মানের অভাবক্লান্ত হয়ে পড়াবিষন্নতাখুব কম বা খুব বেশি খাবার খাওয়ামদ্যপান এবং ধূমপানের মত ক্ষতিকর অভ্যাস করাএকাগ্রতা বা মনোযোগের অভাবওজন কমা বা বাড়ামাথাব্যথাসবসময় চিন্তিত অনুভব করাকোষ্ঠকাঠিন্যশক বা ধাক্কা লাগা এবং কোন কিছু বিশ্বাস না করাডায়রিয়াউদ্বেগ বা দুশ্চিন্তাপেশীতে ব্যথাভয় অনুভব করামাথা ঘোরা টেনশনের প্রধান কারণগুলি হলপরিবার কাজ এবং ব্যক্তিগত বিষয়গুলির সাথে যুক্ত চাপপোস্টট্রমেটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডারের (পিটিএসডি/PTSD) মত চাপের রোগগুলিএকজন ঘনিষ্ঠ পরিবারের সদস্যকে হারানো১অতিরিক্ত চাপের মধ্যে থাকা২দুখঃবাদ৩জীবনের মূখ্য পরিবর্তন৪বাচ্চা হওয়া একজন ডাক্তার চিকিৎসার ইতিহাস জেনে চাপের নির্ণয়ের জন্য শারীরিক পরীক্ষা করেননিচে দেওয়া পদ্ধতিগুলি ব্যবহার করে টেনশনের চিকিৎসা করা হয়জ্ঞানীয় আচরণগত থেরাপি এই থেরাপিটি মন থেকে নেতিবাচক অনুভূতি এবং চিন্তাগুলিকে বার করতে এবং একজন ব্যক্তিকে শান্ত ও ইতিবাচক রাখতে সাহায্য করে এটা ঘুম এবং খাবারের সমস্যাগুলির থেকে এবং অ্যালকোহল পানের মত অভ্যাসগুলির থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করেশিথিল করার কৌশলগুলি ধ্যান যোগব্যায়াম এবং প্রয়োজনীয় তেলগুলির সাথে তাই চি বা অ্যারোমাথেরাপির মত শিথিল করার কৌশলগুলির পাশাপাশি সামাজিক সহায়তা এবং গভীর শ্বাসের ব্যায়াম মনকে শিথিল করার জন্য করতে পরামর্শ দেওয়া হয়শারীরিক ক্রিয়াকলাপ নিয়মিত শারীরিক ক্রিয়াকলাপ করে মেজাজ উন্নত করতে এবং পেশী উত্তেজনা কমাতে পরামর্শ দেওয়া হয়গ্রুপ থেরাপি এবং মনোবিদ্যাগত সেশন ওপেন গ্রুপ বা ক্লোস গ্রুপ সেশনে অংশগ্রহণ করার পরামর্শ দেওয়া হয় যা আবেগের বিকাশ করতে সামাজিক দক্ষতা উন্নত করতে এবং আত্মবিশ্বাসী করতে সাহায্য করেঅ্যালকোহল ব্যবহার ব্যাধির মত ভাং বা গাঁজা ব্যবহারের ব্যাধি আফিম ব্যবহারের ব্যাধি এবং তামাক ব্যবহারের ব্যাধির আসক্তিগ্রস্থ অবস্থার জন্য থেরাপি সিফিলিস একটি সংক্রামক রোগ যা মূলত যৌনপথে সংবাহিত হয় কিছুক্ষেত্রে ঘনিষ্ঠ শারীরিক সংস্পর্শের মাধ্যমেও এটি ছড়িয়ে পড়তে পারেএই রোগটি একজন মানুষের মধ্যে দীর্ঘসময় সুপ্তাবস্থায় থাকতে পারে এরা সংক্রমণটির বাহকে পরিণত হয় উৎসগত ভাবে সিফিলিস একটি ব্যাকটেরিয়াল রোগ সিফিলিস ঘটে তিনটি পৃথক পর্যায়ে এর প্রতিটি পর্যায়ের কিছু নির্দিষ্ট উপসর্গ আছেপ্রাথমিক পর্যায়ের সিফিলিসএটি একটি প্রারম্ভিক পর্যায় যা সংক্রমণের 3 মাস অবধি দেখা যায়আক্রান্তের শরীরে ক্ষুদ্র যন্ত্রণাহীন ক্ষতের সৃষ্টি হয় তবে অন্য কোন গুরুতর উপসর্গ দেখা দেয় নাকোন হস্তক্ষেপ ছাড়াই কয়েক সপ্তাহের মধ্যে প্রাথমিক পর্যায়ের সিফিলিসের নিরাময় ঘটেদ্বিতীয় পর্যায়ের সিফিলিসউপসর্গের অগ্রগতি ঘটে হাতে পায়ে ও যৌনাঙ্গে ফুসকুড়ি দেখা দেয়সংক্রমণের 6 মাস পর পর্যন্ত এই পর্যায়টি স্থায়ী হয়এছাড়াও আক্রান্তের মধ্যে জ্বর মাথা যন্ত্রণা এবং যৌনাঙ্গে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি প্রভৃতি উপসর্গ দেখা দিতে পারেতৃতীয়/অন্তিম পর্যায়ের সিফিলিসএটি রোগের অগ্রসর পর্যায় যেখানে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গগুলি ক্ষতিগ্রস্থ হয়এই পর্যায়ে সবথেকে গুরুতর যে উপসর্গগুলি দেখা যেতে পারে সেগুলি হল অন্ধত্ব পক্ষাঘাত এবং হৃদযন্ত্রের সমস্যাচিকিৎসা করা না হলে এটি প্রাণঘাতী হয়ে উঠতে পারে সিফিলিস ঘটানোর জন্য দায়ী ব্যাকটেরিয়াটি হল ট্রেপোনেমা প্যালিডামএই সংক্রমণটি সাধারণত অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে ছড়ায়সমকামী পুরুষদের মধ্যে সিফিলিসে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকেআক্রান্ত মা থেকে তার সদ্যোজাত শিশুর মধ্যে এই সংক্রমণ পরিবাহিত হতে পারে একে বলে কনজেনিটাল সিফিলিস বা জন্মগত সিফিলিসআক্রান্ত ব্যক্তির অনাবৃত ফুসকুড়ি বা ক্ষতের সংস্পর্শে আসার ফলেও এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে সিফিলিস রোগের নির্ণয়করণকোন পরীক্ষার আগে চিকিৎসক রোগীর থেকে তার যৌনসম্পর্কের ইতিহাস সংগ্রহ করবেন এবং ত্বক বিশেষত যৌনাঙ্গের ত্বক পর্যবেক্ষণ করবেনযদি উপসর্গ ও পর্যবেক্ষণ সিফিলিসের দিকে ইঙ্গিত করে তবে রক্ত পরীক্ষা করা হয় এবং সিফিলিসের ব্যাকটেরিয়ার সন্ধানে শরীরের ক্ষতগুলি পরীক্ষা করা হয়যদি রোগী তৃতীয় পর্যায়ের সিফিলিসে ভুগছে বলে সন্দেহ করা হয় তবে বিভিন্ন অঙ্গগুলির অবস্থা জানার জন্য পরীক্ষা করা হয়সুষুম্নাকান্ড থেকে তরল সংগ্রহ করে ব্যাকটেরিয়ার উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয় এর থেকে জানা যায় রোগটি স্নায়ুতন্ত্রে প্রভাব ফেলেছে কিনাসিফিলিস নিশ্চিতভাবে নির্ণয় হলে আক্রান্তের যৌনসঙ্গীকেও এই রোগটির জন্য পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়সিফিলিসের চিকিৎসাগোড়ার দিকে সিফিলিসের জন্য এন্টিবায়োটিক দেওয়া হয় এগুলো সাধারণত ইনজেকশনের মাধ্যমে প্রয়োগ করা হয় সিফিলিসের চিকিৎসায় ব্যবহৃত একটি পরিচিত এন্টিবায়োটিক হল পেনিসিলিনতৃতীয় পর্যায়ের সিফিলিসে ব্যাপক চিকিৎসার প্রয়োজন হয় মূলত উপসর্গগুলির উন্নতির জন্য কারণ এই পর্যায়ে জীবাণুটিকে সম্পূর্ণ ধ্বংস করা আর সম্ভব নয়চিকিৎসা চলাকালীন রোগীর যেকোন যৌন কার্যকলাপ বা ঘনিষ্ঠ শারীরিক সম্পর্ক থেকে বিরত থাকা অত্যন্ত প্রয়োজনীয় আত্মহত্যা হল নিজের জীবন নিজের হাতে শেষ করে দেওয়া একজন মানুষের আত্মহত্যা করার ভাবনা বা পরিকল্পনা করার প্রবৃত্তিকে আত্মহত্যার প্রবণতা বলে যদিও সরাসরিভাবে বোঝার কোন রাস্তা নেই যে একজন আত্মহত্যা করতে পারে কিন্তু কিছু সতর্কতা মূলক সংকেত আছে যা আমাদের লক্ষ্য রাখা উচিত যেমনসেই ব্যক্তি হয়তো নিজেকে সবার থেকে আলাদা করে রাখবে এবং বিতৃষ্ণা দেখাবে দৈনন্দিন কাজের প্রতিহয়তো কারুর নিঃসঙ্গ বোধ হতে পারে অসহায় লাগতে পারে এবং নিজের জীবনে খুশি হওয়ার কোন কারণ খুজে পেতে নাও পারেঘন ঘন মেজাজ বদল একটা লক্ষণ যার লক্ষ্য রাখা প্রয়োজনকেউ হয়তো মৃত্যুর বিষয়ে ঘন ঘন কথা বলে এবং হয়তো বা সে এর জন্য তৈরি হচ্ছে বা পরিকল্পনা করছেএকজন ব্যক্তি যে আত্মহত্যা করার কথা ভাবছে কোন ড্রাগ বা মাদকদ্রব্যের বা অন্য কোন আসক্তির কবলেও পড়তে পারেগ্লানি অসহায়তা বা নিজে যোগ্য না ভাবা কথা ভাবাও হল সাধারণ কিছু লক্ষণ যেটা আত্মহত্যা যারা করতে চায় তাঁদের মধ্যে দেখা গেছে কেউই একটা মাত্র কারণ দিতে পারে না নিজের জীবন শেষ করে দিতে চাওয়ার পিছনে তাও শতর্কতামূলক লক্ষণ হিসাবে কিছু ঝুঁকির কারণ আছে যা উক্ত ব্যক্তিকে বাধ্য করে এই সব চিন্তাভাবনা করতেখুব বড় কিছু হারিয়ে ফেলা বা শারীরিক আঘাত বা কোন মানসিক আঘাত আত্মহত্যার কথা ভাবতে বাধ্য করেআর্থিক সমস্যা চাকরি জীবনে সন্তুষ্টি না পাওয়া বা কজের সঙ্গে জড়িত কোন সমস্যাও মানুষকে আত্মহত্যার কথা ভাবতে বাধ্য করেকেউ এজন্যও আত্মহত্যার কথা ভাবে কারণ সে অনেক দিন ধরে কোন বড় শারীরিক বা মানসিক অসুস্থতায় ভুগছে বা যদি তাঁর দীর্ঘদিন ধরে স্বাস্থ্যের কোন সমস্যা থাকেপারিবারিক ঝামেলা সাংসারিক সমস্যা বা ঝগড়া বা কোন ভালোবাসার মানুষের সাথে মনমালিন্য কাউকে অসহায় এবং আত্মহত্যা করার কথা ভাবতে বাধ্য করে একজনের আচরণের ওপর নির্ভর করে তার ইতিহাস এবং মনভাবের ওপর নির্ভর করে বিশেষজ্ঞ বলতে পারেন যে সেই ব্যক্তির আত্মহত্যা করার প্রবণতা আছে কি না তারা আপনার ব্যক্তিগত জীবনের স্বাস্থ্যের সমস্যার আপনি কি কি ওষুধ খান বা আগে খেয়েছেন এবং অন্য কোন প্রয়োজনীয় তথ্য জানতে চাইবেনআত্মহত্যার প্রবণতার চিকিৎসা করা মানে সেই ভাবনাগুলো যা এই অবস্থার কারণ তার চিকিৎসা করাএটা অনেকভাবে করা যায় যেমন বিভিন্ন ধরণের থেরাপি এবং মাঝে মাঝে ওষুধ খাওয়াও দরকার হতে পারেসাইকোথেরাপি এবং কগনেটিভ বিহেভরিয়াল থেরাপি হল সেই ধরণের থেরাপি যা সাহায্য করতে পারেঅভ্যন্তরীণ শারীরিক অসুস্থতার চিকিৎসা করা খুবই দরকারঅ্যান্টিডিপ্রেসেন্টের মতো ওষুধ হয়তো দেওয়া হতে পারে যদি দরকার পড়েএটা খুবই জরুরী একটি মানুষের জন্য যে সে নিজের জীবনযাপনে ইতিবাচক পরিবর্তন আনে জিনিসপত্রের অপচয় বন্ধ করে এবং এমন কিছু করে সময় কাটায় যা তাকে খুশি করে যেমন কোন শখ বা নিজের বন্ধু এবং পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো স্ট্রোক একটি সম্ভাব্য মারাত্মক স্নায়ু সম্পর্কিত শারীরিক অবস্থা যা যখন মস্তিষ্কের কোনো এক অংশে রক্ত সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায় তখন ঘটে দ্রুত এবং সক্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি মস্তিষ্ককে দ্বীর্ঘস্থায়ী ক্ষতি এবং অক্ষমতা থেকে বাঁচাবে লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি পরিবর্তন হয় এবং হটাৎ ঘটে এবং প্রতিটি ব্যক্তির ক্ষেত্রে আলাদা হয় এগুলিকে এফএএসটি হিসাবে চিহ্নিত করা হয় মুখ (ফেস ) চোখ বা ঠোঁটের সাথে মুখও একদিকে বেঁকে যায় এবং হাসতে অক্ষম হয়ে পরেহাত (আর্মস) দুর্বলতা বা অবসতার কারণে দুটো হাতই তুলতে অক্ষমবক্তৃতা (স্পিচ) জেগে থাকা অবস্থায় কথা বলতে অক্ষমসময় (টাইম) তৎক্ষণাৎ চিকিৎসা ব্যবস্থার জন্য কল করুনঅন্যান্য উপসর্গগুলোর অন্তর্ভুক্ত হলো কোনো এক দিকের বা কোনো বিশেষ অঙ্গের সম্পূর্ণ প্যারালাইসিস যেমন মুখের এক পাশেরআবঝা দৃষ্টি বা অন্ধ হয়ে যাওয়াঝিমুনি বা মাথা ঘোরাধন্দভারসাম্য এবং সমন্বয়ের সমস্যাকিছু গিলতে সমস্যাচেতনা হারিয়ে ফেলাশরীরের এক বা দুই পাশে অবসতা মস্তিষ্কে রক্ত সরবরাহের ব্লকেজের ফলে ইসকেমিক স্ট্রোক হয় রক্তনালীর দেওয়ালে ভেতর থেকে প্লেক (কলেস্টেরল এবং ক্যালসিয়াম) জমা হওয়ার কারণে ব্লকেজ হয়মস্তিষ্কে কোনো একটি ধমনী ফেটে যাওয়ার কারণে হেমোরেজিক স্ট্রোক (সেরেব্রাল বা ইন্ট্রাক্রেনিয়াল) হয় হেমারেজ স্ট্রোকের আরেকটি প্রধান কারণ হলো উচ্চ রক্ত চাপধমনীর আংশিক ব্লকেজের কারণে ট্রানসিয়েন্ট ইসকেমিক আক্রমণ যাকে মিনি স্ট্রোক বা ওয়ার্নিং স্ট্রোকও বলে হয় এটি একঘন্টার কম সময় অবধি স্থায়ী থাকে এবং একটি আসন্ন গুরুতর স্ট্রোকের সতর্কতার সংকেত আপনার চিকিৎসা ইতিহাস পারিবারিক ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার ওপর ভিত্তি করে ডাক্তার নির্ণয় করতে পারবেন তিনি মুখ হাত এবং পায়ের অবসতাও পরীক্ষা করবেন ঝাপসা দৃষ্টি ধন্দ এবং কথা বলতে সমস্যা এগুলোও পরীক্ষা করবেন রক্ত পরীক্ষা পাল্স রেট এবং রক্ত চাপের পরীক্ষা সিটি স্ক্যান সিটি এনজিওগ্রাম এমআরআই স্ক্যান গ্রাস পরীক্ষা ক্যারোটিড আল্ট্রাসাউন্ড এবং ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম পরিচালনা করা যেতে পারেইসকেমিক স্ট্রোকের চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে থ্রোম্বোলিসিস থ্রমবেকটমি অ্যান্টিপ্লেটেলেট থেরাপি অ্যান্টিকোয়াগুলেন্ট থেরাপি অ্যান্টিহাইপারটেনসিভ ড্রাগস্ স্ট্যাটিনস এবং ক্যারোটিড এন্ডারটেরেক্টমিঅস্ত্রোপচারের দ্বারা মস্তিষ্ক থেকে রক্ত অপসারণ করা হয় এবং মস্তিষ্কের মধ্যে উচ্চ চাপকে নিয়ন্ত্রণ করা হয় এবং এই ভাবে হেমোরেজিক স্ট্রোকের চিকিৎসা করা হয় ঘুমানোর সময় নাকে বাতাস চলাচলে বাধা সৃষ্টি হওয়ার ফলে নাক ডাকা হয় সাধারণত যাদের গলা ও নাকের টিস্যু খুব বেশি পরিমাণে বা টিস্যুগুলি ফাঁপা অবস্থায় থাকার জন্য কম্পন সৃষ্টি হয়যা পড়ে নাকডাকার সময় শব্দের সৃষ্টি ঘটায় নাকডাকার ফলে ঘুমের ব্যাঘাত ঘটে দিনের বেলা ঘুম পাওয়ামনোযোগের অভাব ও কামশক্তি কমে যায় এর কারণে মানসিক ক্ষতি ও হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বেড়ে যায় নাকডাকা অতি সাধারণ ব্যাপার এবং এটি কোন গুরুতর কারণের জন্য হয়না অপনার ঘুমানোর সময় জিভগলামুখফুসফুসে বায়ু চলাচলের পথটি শিথিল ও সরু হয়ে যায় আপনার শ্বাস নেওয়ার সময় যখন শরীরের এই অংশগুলিতে কম্পন হয় তখন এর ফলে নাকডাকে নাকডাকার কিছু সাধারণ কারণগুলি হলঃঅ্যালার্জি বা সাইনাস সংক্রমণনাকের গঠনগত ত্রুটি যেমন নাকের পর্দাটির বিভাজন বা নাসারন্ধ্রে পলিপের কারণে বাধাস্থুলতামোটা বা পুরু জিভগর্ভাবস্থাজিনগত ত্রুটিমদ্যপান ও ধূমপানের মতো নেশাটনসিল ও গলরসগ্রন্থির বৃদ্ধি পাওয়াবিশেষ কিছু ওষুধের ব্যবহার নাকডাকার কারণ জানার জন্য চিকিৎসক আপনার নাক ও মুখ পরীক্ষা করবেন আপনার সঙ্গী সবথেকে ভালোভাবে আপনার নাকডাকার ধরনটি বিশ্লেষণ করতে পারবে নাকডাকার কারণটি যদি স্পষ্ট না হয় সেক্ষেত্রে আপনার চিকিৎসক একজন বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিতে বলবেন বাড়িতে বা গুরুতর ক্ষেত্রে পরীক্ষাগারে ঘুমের একটি পরীক্ষা করার জন্য আপনার মতামত নেওয়া হবে ঘুমের পরীক্ষা করতে আপনার শরীরের বিভিন্ন অংশে সেন্সর লাগিয়ে দেওয়া হবে যা আপনার মস্তিষ্কের তরঙ্গের হৃদস্পন্দনের এবং নিশ্বাসের গতি নথিভুক্ত করবে সাধারণ বাড়িতে পলিসনোগ্রাফির মাধ্যমে ঘুমের পরীক্ষা করার সময় অবসট্রাকটিভ স্লিপ আপ্নিয়া নির্ণয় হতে পারে স্লিপ ডিসঅর্ডার অবসট্রাকটিভ স্লিপ আপ্নিয়ার একটি অংশ যা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে বা পরীক্ষাগারে ঘুমের পরীক্ষা করার ফলে ধরা পড়েযদি ঘুমের পরীক্ষা করে নাকডাকার কারণ চিহ্নিত করতে না পারা যায় সেক্ষেত্রে উপযুক্ত কারণ নির্ণয়ের জন্য বুকের এক্সরে সিটি ও এমআরআই স্ক্যান করতে বলা হয়একটি নির্দিষ্ট চিকিৎসা দ্বারা নাকডাকা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ করা সম্ভব নয় তবে নির্দিষ্ট কিছু চিকিৎসার দ্বারা শ্বাস গ্রহণের বন্ধ অংশগুলি পরিষ্কার করে অস্বস্তিকে কমাতে সাহায্য করবেজীবন শৈলীর পরিবর্তন ধূমপান ছেড়ে দেওয়া ও মদ্যপান এড়িয়ে চলা ও স্বস্তিদায়ক ওষুধগুলি ঘুমানোর আগে গ্রহন করলে নাকডাকা কমবে নাকের স্প্রে স্ট্রিপ বা ক্লিপ মুখের যন্ত্র বিশেষ লুব্রিকেনট স্প্রে এবং নাকডাকা কমাতে সাহায্যকারী বালিশ ও পোশাক নাকডাকা কমাতে সাহায্য করবেচিকিৎসক যে সংশোধনগুলির পরামর্শ দেবেন সেগুলি হলকন্টিনিউয়াস পসিটিভ এয়ারওয়ে প্রেসার (সিপিএপি)লেসার – এসিসটেড ওভুলোপ্যালাটোপ্লাষ্টি (এলএইউপি)পালাট্যাল ইমপ্ল্যানটসসোনোপ্লাষ্টি – অতিরিক্ত টিস্যুর নিষ্কাশনে স্বল্প মাত্রার রেডিও ফ্রিক্যুয়েন্সির ব্যবহারদাঁতের মধ্যে বা নীচের চোয়ালে – অঞ্চল সেট করার জন্য সঠিক মাপের যন্ত্র স্থাপনঅস্ত্রোপচার পদ্ধতির মধ্যে ওভুলোপ্যালাটোফ্যারিঙ্গপ্লাষ্টি (ইউপিপিপি) থার্মাল অ্যাব্লেসন প্যালাটোপ্ল্যাসটি (টিএপি) টনসিল্যাকটোমি ও অ্যাডিনিওডেকটোমির ব্যবহারনাকডাকা এড়াতে আপনি পিঠের ওপর ভর দিয়া না শুয়ে পাশ ফিরে আপনার মাথাটি উঁচু করে শুতে এবং নাকডাকা রোধ করে এমন মুখের যন্ত্র ব্যবহার করতে চেষ্টা করুন ঘুমের ক্ষতি (স্লিপ ডিপ্রাইভেশন) বলতে পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবকে নির্দেশ করে যা বিভিন্ন কারণবশত ঘটতে পারে এটি কোন রোগ নয় তবে বিভিন্ন রোগ বা জীবনধারার পরিস্থিতির উপসর্গগুলি ঘুমের অভ্যাসের ব্যাঘাত ঘটায় ঘুমের অভাবের ফলে বিভিন্ন শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে তাই দ্রুত বিষয়টি সংশোধন করা উচিত ঘুমের ক্ষতি (স্লিপ ডিপ্রাইভেশন) সাথে জড়িত যে বিশেষ লক্ষণ ও উপসর্গগুলি দেখতে পাওয়া যায় সেগুলি হল১ঘুমাতে অসুবিধা হওয়া২অস্বস্তিকর বা বিরক্তিকর আচরণ৩মনোযোগের অভাব হওয়া৪তাড়াতাড়ি ঘুম থেকে উঠে পরা৫ঘন ঘন দিনের বেলায় ঘুম পাওয়া৬ঘুম থেকে ওঠার পরেও সতেজতার অভাব অনুভব হওয়া৭সিদ্ধান্ত গ্রহণে ও চিন্তনে বাধা সৃষ্টি৮নাকডাকা৯পাঁচটি সাধারণ স্লিপ ডিসঅর্ডার যা দেখতে পাওয়া যায় তার মধ্যে রয়েছেঘুমানোয় অসুবিধা বা ইনসোমনিয়া ১০শ্বাস প্রশ্বাস বাধাপ্রাপ্ত হওয়া বা স্লিপ আপ্নিয়া১১ দিনের বেলায় অতিরিক্ত ঘুমানো১২বিশ্রামহীনতা জন্য পায়ের নড়াচড়ায় অনিয়ন্ত্রন১৩স্লিপ ডিসঅর্ডারে ঘন ঘন চোখের নড়াচড়া ঘুমের ছন্দের ব্যঘাতের সাথে বিভিন্ন কারণ জড়িত প্রধান কারণগুলি হল১কর্মস্থলে অনিয়মিত বা রাত্রে কাজ করা২অতিরিক্ত সময় ধরে কাজ করা৩অ্যাজমা বা হাঁপানি রোগ৪অবসাদ বা উদ্বিগ্নতা৫মদ্যপানের অভ্যাস৬মানসিক চাপ৭বিশেষ কিছু ওষুধের ব্যবহার৮বংশগত ইতিহাস৯বার্ধক্যজনিত অবস্থা চিকিৎসক আপনার পূর্বে ঘটা ঘুমের ভঙ্গিমার বিষয় এবং আপনার পরিবারের সদস্যদের কাছ থেকে রাতে আপনি কোন পর্যায়ে ঘুমাচ্ছন্ন থাকেন সে বিষয়েও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারেন আপনার ঘুমের ভঙ্গিমা এবং সংগৃহীত তথ্য অনুযায়ী পরিস্থিতি নির্ণয় করার জন্য একটি ঘুমের সময় তালিকার ব্যবহার করা হতে পারেঘুমের ওষুধের দ্বারা ঘুমের ক্ষতি পরিচালিত হতে পারে কিন্তু যদি এগুলি কম কার্যকারী হয় তাহলে ওষুধ বিহীন পদ্ধতির প্রচেষ্টা করা হতে পারে যেগুলি নীচে দেওয়া হলো নিজেকে আরামদায়ক একটি ঘুমের ভঙ্গিমায় সন্নিবেশিত করা সমস্ত বৈদ্যুতিক যন্ত্রাংশের সুইচ বন্ধ করে দেওয়া ও বিছানা থেকে সেগুলি দূরে রাখা উচিত ঘুমাতে সাহায্যকারী কোন আরামদায়ক পদ্ধতি গ্রহন করা সঠিক সময় ঘুমাতে যাওয়া ও ঘুম থেকে ওঠার জন্য একটি বিশেষ সময়সূচী পালন করা ঘুমাতে সাহায্য করবে এমন হালকা কিছু খাবার খাওয়া ও দুধ পান করা রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ডিনারে কখনও বেশি খাবার বা পানীয় গ্রহন করবেন না বিছানায় ঘুমাতে গিয়ে যাতে অসুবিধা না হয় সেজন্য মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপের ব্যবহার এড়িয়ে চলা ধূমপান ও মদ্যপানের মতো অন্যান্য পানীয় যেমন চা ও কফি এগুলো সন্ধ্যা থেকে এড়িয়ে চলা ঘুমের ওষুধের প্রতি নির্ভরশীলতা এড়িয়ে চলা শোয়ারঘরে বিশেষত বিছানায় ঘুমানো ছাড়া অন্য যাবতীয় কাজ এড়িয়ে চলা স্লিপ অ্যাপনিয়া এমন একটি ঘুমের অসুখ যাতে ব্যক্তির ঘুমানোর সময় শ্বাস নেওয়া ক্রমাগত বন্ধ হয়ে যায় ও পুনরায় শুরু হয় অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সাধারণ অবস্থা যেখানে নাক থেকে শ্বাসনালীর মধ্যেকার শ্বাসপথের উপরিভাগের কোনও একটি অংশ অবরুদ্ধ হয়ে যাওয়ার ফলে আপনি নাক ডাকেন সেন্ট্রাল স্লিপ অ্যাপনিয়া এমন একটি অবস্থা যেখানে মস্তিষ্ক থেকে শ্বাস নেওয়ার সঙ্কেত শ্বাসপ্রশ্বাসের পেশীতে পাঠানো হয় না মনে রাখা রাখা জরুরি স্লিপ অ্যাপনিয়ায় আক্রান্ত সবাই রাতে নাক ডাকে না এবং বিপরীতও হতে পারে যেহেতু উপসর্গগুলি রাতে ঘুমানোর সময় ঘটে তাই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের পক্ষে নিজের সমস্যা বোঝা মুশকিল এর সাথে জড়িত কিছু উপসর্গগুলি ১ রাতে ঘুমানোর সময় শ্বাস নিতে সমস্যা হওয়ায় দিনেরবেলা ঘুমিয়ে পড়া২ঘুমানোর সময় হাঁপানো ও শ্বাসরুদ্ধ হওয়া৩মুখের শুষ্কতা এবং সকালে মাথাযন্ত্রণা৪জোরে নাক ডাকা৫অত্যধিক খিটখিটে এবং বদমেজাজি হয়ে পড়া৬সারাদিন ধরে ঝিমুনিভাব স্লিপ অ্যাপনিয়া অন্তর্নিহিত চিকিৎসাজনিত কারণের ফলে হয় যেমন১বিশেষত গলা ও বুকের চারপাশের অঞ্চলে স্থুলতা২বড টনসিলের বৃদ্ধি পাওয়া৩স্নায়বিকপেশীগত রোগ৪কিডনির বিকলতা অথবা হৃদযন্ত্রের বিকলতা৫জিনগত অসুখ৬স্বাভাবিক সময়ের আগে জন্মগ্রহণ আপনার সঙ্গে এক বিছানায় ঘুমোন এমন ব্যক্তির দেওয়া আপনার ঘুমের বিশদ বিবরণ এবং বিস্তারিত শারীরিক পরীক্ষার ভিত্তিতে চিকিৎসক মূল্যায়ন করবেন কোনও স্লিপ সেন্টারে শ্বাসপ্রশ্বাস ও শারীরিক ক্রিয়াকলাপের ওপর সারারাত তদারকি স্লিপ অ্যাপনিয়ার নিশ্চয়তা নির্ণয়ে সহায়ক হতে পারে নকচারনাল পলিসোমনোগ্রাফি টেস্ট (ঘুম পর্যবেক্ষণ) করা হয় ঘুমের সময় আপনার নিশ্বাসের গতিবিধি রক্তে অক্সিজেনের মাত্রা এবং হৃদযন্ত্র ফুসফুস এবং মস্তিষ্কের কার্যকর্ম পর্যবেক্ষণের জন্য চিকিৎসক হোম স্লিপ টেস্টেরও পরামর্শ দিতে পারেনছোটোখাটো ক্ষেত্রে ওজন কমানো অথবা ধূমপান ত্যাগের মতো জীবনশৈলীতে পরিবর্তন আনার পরামর্শ দেওয়া হয় গুরুতর ক্ষেত্রে অবিরাম সঠিক বায়ুপথের চাপ বা কন্টিনিউয়াস পজিটিভ এয়ারওয়ে প্রেসার (সিপিএপি) বজায় রাখার জন্য মাস্ক দেওয়া হয় জিভ সঠিক স্থানে রাখার জন্য মৌখিক যন্ত্র ব্যবহৃত হয় বায়ু প্রবেশ পথের বাধা সরাতে গলার পিছনে টিস্যু বাদ দিতে অথবা চোয়ালের স্থান পরিবর্তন করতে অস্ত্রোপচারের পরামর্শ দেওয়া হয় সিজারকে সাধারণত মূর্ছা বা খিঁচুনি বলা হয় মস্তিষ্কে আকস্মিকভাবে একাধিক অস্বাভাবিক বৈদ্যুতিক প্রবাহের ফলে সৃষ্ট শারীরিক ও আচরণগত পরিবর্তনের প্রকাশ হয় খিঁচুনির মাধ্যমে ফোকাল সিজার এবং জেনারালাইজড সিজার খিঁচুনির এই দুটি মূল প্রকারভেদের উপসর্গগুলি নিচে উল্লেখ করা হলঃফোকাল সিজার উৎপন্ন হয় মস্তিষ্কের একটি নির্দিষ্ট অংশ থেকে এর উপসর্গগুলি হল১শরীরের যেকোন অংশের আকস্মিক বিচলন২সচেতনতার পরিবর্তনের ফলে চলন ও ক্রিয়াকলাপের বদল৩আক্রান্ত ব্যক্তির আলোর জ্যোতি দেখার অভিজ্ঞতা হতে পারে৪বাস্তবে উপস্থিত নয় এমন শব্দ গন্ধ বা স্বাদের অনুভূতিজেনারালাইজড সিজারের উপসর্গগুলি হলএবসেন্স সিজার শিশুদের মধ্যে এটি বেশি দেখতে পাওয়া যায় এই সময় শিশুদের দেখে মনে হতে পারে তারা কোন শূন্যস্থানের দিকে তাকিয়ে আছে অথবা অল্পসময়ের জন্য সচেতনতার অভাব ও শরীরের সূক্ষ্ম নড়াচড়া দেখা যেতে পারেটোনিক সিজার পেশীর কাঠিন্য যা আক্রান্তের পতনের কারণ হতে পারে সাধারণত পিঠ হাত ও পায়ের পেশী এতে প্রভাবিত হয়ক্লোনিক সিজার ঝাঁকুনিযুক্ত পেশীর চলন সাধারণত মুখ ঘাড় ও হাতের পেশিতে দেখতে পাওয়া যায়টোনিকক্লোনিক সিজার আক্রান্ত টোনিক ও ক্লোনিক সিজারের উপসর্গগুলি সম্মিলিতভাবে অনুভব করতে পারেমায়োক্লোনিক সিজার পেশীর কম্পনের পাশাপাশি ছোট ঝাঁকুনিযুক্ত চলনএটোনিক সিজার পেশীর নিয়ন্ত্রণ হ্রাস পাওয়ার ফলে আক্রান্ত পড়ে যেতে পারে অধিকাংশ স্নায়বিক সমস্যার মত খিঁচুনিরও কোন নির্দিষ্ট কারণ জানা নেই তবে এর সবথেকে পরিচিত কারণটি হল মৃগীরোগ অন্যান্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে১জিনগত কারণ জিনের পরিবর্তন ও জিনগত উত্তরাধিকার খিঁচুনি সৃষ্টির ঘটনায় একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে২মস্তিষ্কের টিউমার মাথায় আঘাত স্নায়বিক বিকাশজনিত সমস্যা মস্তিষ্কের প্রদাহ বা এলজাইমার্স রোগ৩হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাসের (এইচআইভি) সংক্রমণ৪মদ্যপান ও মাদক সেবন৫ঘুমের অভাব জ্বর৬এন্টিডিপ্রেসেন্ট এনালজেসিক ডাইইউরেটিক প্রভৃতি ওষুধের প্রভাবে একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ চিকিৎসার ইতিহাস সংগ্রহের পাশাপাশি কয়েকটি নির্দিষ্ট পরীক্ষা খিঁচুনি নির্ণয়ে সাহায্য করেসংক্রমণ জিনগত সমস্যা হরমোন বা ইলেক্ট্রোলাইটের ভারসাম্যের অভাব সন্ধান করতে রক্তপরীক্ষা করা হয়লাম্বার পাংচারইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রামনিউরোলজিক্যাল ফাংশন টেস্ট (স্নায়বিক ক্রিয়ার পরীক্ষা)ম্যাগনেটিক রেসোনান্স ইমেজিং (এমআরআই)পজিট্রন এমিশন টোমোগ্রাফি (পিইটি) স্ক্যানকিছুক্ষেত্রে খিঁচুনি মাত্র একবারই ঘটতে পারে এবং এর কোন চিকিৎসার প্রয়োজন হয় নাযদি বারবার খিঁচুনির ঘটনার পুনরাবৃত্তি হয় তবে চিকিৎসক অ্যান্টিএপিলেপ্টিক (মৃগী রোধের) ওষুধ দিতে পারেন কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হতে পারে খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন যেমন বেশি তেলযুক্ত কম শর্করাযুক্ত কিটোজেনিক খাদ্যাভ্যাস খিঁচুনির চিকিৎসায় সাহায্য করে একই জায়গায় থেকে একটি কাজ স্থিরভাবে ক্রমাগত না করতে পারার অক্ষমতাকে অস্থিরতা বলে এটির বিশদ লক্ষণ ও উপসর্গগুলি বিভিন্ন ব্যক্তিদের মধ্যে বিস্তীর্ণভাবে ভিন্ন আকারে প্রকাশ পায় এটি শারীরিক ও মানসিক উভয় ক্ষত্রেই প্রভাব ফেলে প্রধানত অস্থিরতা অধিক কাজকর্ম করার মতো দেখায় অর্থাৎ একজন ব্যক্তি একই স্থানে বেশিক্ষণ একনাগারে বসে থাকতে পারে না এবং বার বার স্থান পরিবর্তনের প্রয়োজন অনুভব করেনএইধরনের অস্থির ব্যক্তিকে কোন দীর্ঘ সময়ের কথোপকথন বা কাজে জড়িত রাখা খুব কঠিন বিষয় যে সকল ব্যক্তির মধ্যে অস্থিরতা আছে সেই ব্যক্তিরা বসে থাকার সময় পায়ে বেদনাদায়ক শির টেনে ধরা অনুভব করতে পারেনহাত পায়ে ঝিনঝিন ধরা অবশ ও কম্পনের মতো সংবেদনশীলতা ও আরও কিছু অন্যান্য লক্ষণ দেখা দিতে পারে ঘুমের সময় বার বার উদ্বিগ্নতা ও বিভ্রান্তির জন্য অস্থির ব্যক্তির ঘুমাতে সমস্যা হয় গুরুতর ক্ষেত্রে কেউ কেউ বুক ধরপরের সাথে অতিরিক্ত ঘেমে যাওয়া অনুভব করেন সাধারণত বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অস্থিরতার কারণগুলি ওষুধের সাথে সম্পর্কিত এটেনসন ডিফিকট হাইপারএকটিভিটি ডিসর্ডার (এডিএইচডি) ও অ্যাস্থমা ইত্যাদি রোগ ঘুমের ওষুধ ও বমি কমানোর ওষুধের পার্শ্ব প্রতিক্রিয়ার সাথে জড়িতঅস্থিরতার আরেকটি সাধারণ কারণ ক্যাফিনের আসক্তি বা এর অত্যধিক ব্যবহার চা বা কফি মত উপাদানে প্রচুর মাত্রায় ক্যাফিন থাকেস্ক্রিতজোফ্রেনিয়া এডিএইচডি স্মৃতিভ্রংশ ও উদবিগ্নতার মতো নিউরোলজিক্যাল অবস্থার সাথে অস্থিরতার বিষয় জড়িতব্যক্তির মধ্যে হাইপারথাইরয়েডিজম এর হরমোনাল অস্বাভাবিকতাও অস্থিরতা বৃদ্ধির অন্যতম কারণ বিভিন্ন কারনের সাথে অস্থিরতা জড়িত একজন বিশেষজ্ঞ পূর্ব চিকিৎসার তথ্য ও উপসর্গগুলির ওপর ভিত্তি করেই রোগটি নির্ণয় করেননির্ণয়ে পৌঁছানোর জন্য চিকিৎসকের কাছে আপনার জীবনধারা ও কি কি ওষুধ গ্রহণ করছেন বা কোন শারীরিক পরীক্ষা করেছেন কিনা সে সম্পর্কে জানানো অতি গুরুত্বপূর্ণফার্মাসোলজিক্যাল ম্যানেজমেন্টের পরিবর্তে তুলনামূলক ভাবে জীবনশৈলী ও অভ্যাস পরিবর্তনের মাধ্যমেও অস্থিরতার চিকিৎসা করা সম্ভবচিকিৎসক আপনাকে সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুমের সময়সূচি বজায় রাখতে এবং রাতে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে পরামর্শ দেবেনঅস্থিরতার উন্নতিসাধনে চিকিৎসক আপনাকে ক্যাফেন স্বল্প পরিমানে গ্রহণের পরামর্শ দেবেনযদি ওষুধের কারণে এই অবস্থা সৃষ্টি হয় তবে ওষুধের ডোজ বন্ধ বা সংশোধন করার আগে আপনার চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি শরীরের ওপর অকল্পনীয় পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ঘটাতে পারেএডিএইচডি ও স্ক্রিতজোফ্রেনিয়ার মতো স্বাস্থ্য পরিস্থিতির ক্ষেত্রে উপযুক্ত ঘুমের ওষুধ বা নিদ্রা আকর্ষণকারী ওষুধ দেওয়া হতে পারে বিশ্রামহীন পায়ের সিন্ড্রোমটি স্নায়ু তন্ত্রের সাথে জড়িত অবস্থায় থাকে এবং ক্রমাগত পায়ের নড়াচড়ার ফলে এই ঘটনাটি ঘটে এটির ফলে থাই পায়ের ডিমেও বিরলভাবে হাতে বুকে একটি অস্বস্তিকর সংবেদনশীলতা বা ভর না দিতে পারা বা চাপের সৃষ্টি হয় যা সন্ধ্যের পর বা রাতে পরিস্থিতিকে আরও জটিল করে তোলে উপসর্গগুলি খুব অস্বস্তিকর যা প্রতিদিন বা কোন কোন দিন হালকা থেকে মাঝারি হতে পারে এগুলি হল পায়ে বেদনাদায়ক খিল ধরা চুলকানো প্রলম্বন ভর দেওয়া তীব্র যন্ত্রণা জ্বালা বা ঢিপ ঢিপ করার মতো সংবেদনশীলতার সৃষ্টি (বিশেষত পায়ের ডিমে)মনে হয় যেনপায়ের রক্তবাহী নালিগুলি ঠাণ্ডা জল দ্বারা পরিপূর্ণ হয়ে গেছেদীর্ঘ সময় বসে থাকা অসুবিধাজনক হয়ে ওঠেঘুমের সময় প্রতি 20 থকে 40 সেকেন্ডে স্বল্পভাবে অঙ্গ প্রতঙ্গের নড়াচড়ার পুনরাবৃত্তি (পিএলএমএস) অপ্রত্যাশিত ঝাঁকুনি বা হালকা টান ধরাজেগে থাকা বা বিশ্রামের সময় হঠাৎ অনিচ্ছাকৃত ভাবে পায়ের নড়াচড়া এটির প্রধান কারণ এখনও নিশ্চিতভাবে জানা যায়নি তবে মনে করা হয় এটি বংশগত বা জিনগত কারনের সাথে জড়িত এর সাথে জড়িত থাকতে পারে এমন কিছু কারণগুলি হলপেশীর কার্যকলাপ ও নড়াচড়ার নিয়ন্ত্রিত করার জন্য ডোপামিনের মাত্রা হ্রাস পাওয়া যা নিউরোট্রান্সমিটার নামে পরিচিতআয়রনের অভাবে অ্যানিমিয়া ক্রনিক কিডনি ডিজিজ ডায়াবেটিস বা গর্ভাবস্থার মতো অনন্তৰ্নিহিত কিছু স্বাস্থ্য পরিস্থিতিবিশেষত এর সাথে জড়িত নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ ধূমপান ক্যাফেইন মদ্যপান স্থুলতা দুশ্চিন্তা ও স্বল্প ব্যায়ামের অভ্যাস উপসর্গের বিস্তারিত ইতিহাস তাদের মনে হওয়া তীব্রতা সময়ের সাথে তাদের উপস্থিতি কিভাবে তারা স্বস্তি পাবে অস্বস্তি বা দুশ্চিন্তাজনক উপসর্গগুলির কারণে ঘুমাতে সমস্যা ও অন্যান্য কারণগুলি থেকে এটি নির্ধারণ সম্পূর্ণ হয় শারীরিক পরীক্ষার মাধ্যমে এটি সঞ্চালিত হয় এগুলি হলঅ্যানিমিয়া কিডনি সমস্যা ও ডাইয়াবেটিস আছে কিনা খুঁজে বের করতে রক্ত পরীক্ষা করা হয়বেছানায় শুয়ে শরীরের অঙ্গ প্রতঙ্গগুলি নাড়াচাড়া না করেও অনিচ্ছাকৃত নড়াচড়া পর্যবেক্ষণের জন্য ইমোবিলেসন পরীক্ষা যা ঘুমের পরীক্ষার সাথে জড়িতঘুমানোর সময় মস্তিষ্ক তরঙ্গ ও হৃদস্পন্দন ও নিশ্বাসের হার পর্যবেক্ষণের জন্য পলিসোনগ্রাফি করা হয়বিশ্রামহিন পায়ের সিন্ড্রোমের সাথে জড়িত ব্যবস্থাপনা গুলি হলমৃদু ক্ষেত্রে জীবনশৈলীর উন্নইয়নের সাথে জড়িত ব্যবস্থাপনা গুলি হল১উপরে আলোচিত বিষয়গুলি এড়িয়ে চলা২ভালো ঘুমানোর অভ্যাস করা৩নিয়মিত ব্যায়ামের অভ্যাস করা৪পর্যায়ক্রমে জড়িত থাকা চিকিৎসাগুলি হল৫পায়ে ম্যাসেজ করা ঠাণ্ডা বা গরম সেঁক দেওয়া বা গরম জলে স্নান করা৬মনকে এর থেকে দূরে সরাতে নিজেকে কাজের মধ্যে ব্যস্ত রাখা যেমন বই পড়া৭শিথিল বা প্রসারনে সহায়ক ব্যায়াম করা৮চিকিৎসার সাথে যে ওষুধগুলি ব্যবহার করা হয় সেগুলি হল৯ডোপামেন এগনিসটস যার সাথে জড়িত রোপিনিরোলেপ্রেমিপেক্সলে বা রোটিগোটিনের মত চামড়ার দাগ১০ব্যথা কমানোয় সহায়ক ওষুধগুলির মধ্যে কোডিয়েন গাবাপেন্টিন দেওয়া হয়১১টেমাজপাম ও লোপ্রাযোলেমের মতো ওষুধগুলি ঘুম সংক্রান্ত সমস্যার সমাধানে ব্যবহৃত হয়এই অবস্থা যদি আয়রনের অভাবের কারণে হয় তাহলে আয়রন সম্পুরকের দ্বারা সমাধান করা হয় ও গর্ভাবস্থার জন্য হলে এটি নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায় রেনড ফেনোমেনন (আরপি/RP) একটি এমন সমস্যা যাতে অতিরিক্ত ঠান্ডা আবহাওয়া অথবা মানসিক চাপের কারণে কম পরিমাণে রক্ত পরিবাহিত হওয়ার জন্য হাতের আঙ্গুলের এবং পায়ের আঙ্গুলের রঙের পরিবর্তন (সাদা নীল এবং লাল) হয় এটি অভ্যন্তরীণ কারণগুলির উপর ভিত্তি করে প্রাথমিক বা গৌণ সমস্যা হিসাবে বিবেচিত হতে পারে এই রোগের উপসর্গগুলি থেমে থেমে প্রকাশ পায় যখন একজন ব্যক্তি রোগটির একটি পর্বের অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তখন এইসবগুলি অনুভব করেনশরীরের আক্রান্ত স্থানে এইসকল সংবেদনগুলি অনুভব করা যায়১ব্যথা২পিন বা সুঁচ ফোটানোর মত অনুভূতি৩শিরশিরে অনুভূতি৪অস্বস্তি৫রঙের পরিবর্তন যা এই রোগের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী নীল সাদা বা লাল বর্ণ ধারণ করে৬শরীরের আক্রান্ত অংশটি আন্দোলনে সমস্যা তৈরি হয় রেনড ফেনোমেননের সাধারণ কারণ হল আক্রান্ত ব্যক্তিদের পায়ের আঙ্গুলে ও হাতের আঙ্গুলে মাত্রাতিরিক্ত সংবেদনশীল রক্তবাহ ধমনীগুলির উপস্থিতি প্রাথমিক পর্যায়ের রেনড ফেনোমেনন হল ইডিওপ্যাথিক (অর্থাৎ এর কারণ জানা নেই) অন্যদিকে গৌণ পর্যায়ের কারণগুলির মধ্যে রয়েছে১অটোইমিউন রোগ এবং আর্থারাইটিসের মত কিছু অবস্থা২ফ্রস্টবাইট অথবা তুষারস্পর্শে দেহের প্রদাহ৩কিছু ওষুধ যেমন বিটা ব্লকারস এবং কিছু কেমোথেরাপির ওষুধ৪যান্ত্রিক কম্পন৫অথেরোস্ক্লেরোসিস (ধমনী সরু এবং শক্ত হয়ে যাওয়া)৬ধূমপান সম্পূর্ণ চিকিৎসাগত ইতিহাস ও সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করার পর এই রোগটি নির্ণয় করা হয় এই পরীক্ষাগুলি অনুসরণ করা হয়অটোইমিউনিটির উপস্থিতি আছে কিনা জানতে রক্ত পরীক্ষা করা হয়নেইলফোল্ড ক্যাপিলারোস্কপি নামক একটি পরীক্ষা করা হয় হাতের আঙ্গুলের নখের নিচে রক্তবাহগুলির অবস্থা জানার জন্যহাতের আঙ্গুলের নখের কলাগুলির আনুবীক্ষণিক পরীক্ষাঠান্ডার প্রতি সংবেদনশীলতার পরীক্ষাএই রোগের চিকিৎসায় যেসকল ব্যবস্থাগুলি নেওয়া হয় তার মধ্যে রয়েছেজীবনধারার কিছু পরিবর্তন যেমনরোগের আক্রমণের প্রথম লক্ষণ দেখা দিলেই যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাত ও পা ঈষদুষ্ণ জলে ডুবিয়ে রাখতে হবেহাত ও পা গরম রাখার জন্য ঠান্ডা আবহাওয়ায় গ্লাভস বা মোজা ও হাতপা উষ্ণ রাখার পরিধান ব্যবহার করতে হবেএই রোগের অনুঘটকগুলি যেমন মানসিক চাপ এবং কিছু ওষুধ থেকে দূরে থাকতে হবেরেনড ফেনোমেনন রোগটির প্রকোপ বন্ধ করতে ধূমপান ত্যাগ করা একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপওষুধপত্ররক্তচাপের ওষুধ যেমন ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকারস এবং অ্যাঞ্জিওটেন্সিনরিসেপ্টর ব্লকারস যা রক্তবাহগুলিকে বিস্তৃত করে আক্রান্ত স্থানে রক্ত সঞ্চালণ বাড়াতে সাহায্য করে সেটিও ব্যবহার করা যেতে পারেজটিলতা (আলসার বা ঘা) থেকে মুক্তি পেতে সিল্ডেনাফিল অথবা প্রস্টাসাইক্লিন্স দেওয়া যেতে পারেউপসর্গগুলি থেকে মুক্তি পেতে যেসব ওষুধ দেওয়া হয় সেগুলি হলসাময়িকভাবে ব্যবহারের ক্রিমসিলেক্টিভসেরোটোনিনরিয়াপ্টেক ইনহিবিটর (এসএসআরআই)কোলেস্টেরল কম করার (স্টেটিন) ওষুধ সিউডোমোনাস প্রজাতির ব্যাকটেরিয়াগুলি যে ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণ সৃষ্টি করে তাকে সিউডোমোনাস সংক্রমণ বলে পরিবেশে যথেষ্ট পরিমাণে ছড়িয়ে থাকা এই ব্যাকটেরিয়া একটি অত্যন্ত সাধারণ সংক্রামক জীবাণু হিসাবে কাজ করে সিউডোমোনাসের 200টি প্রজাতি আছে কিন্তু তাদের মধ্যে শুধুমাত্র তিনটি প্রজাতিই মানুষের মধ্যে রোগসৃষ্টি করে বলে জানা যায় এগুলি হল পিএরুজিনোসা পিম্যালেই এবং পিসিউডোম্যালেই সিউডোমোনাসের এই সমস্ত প্রজাতিগুলির মধ্যে পিএরুজিনোসা মানুষের সংক্রমণ ঘটানোর জন্য সবথেকে বেশি দায়ী শরীরের কোন অঙ্গটি প্রভাবিত হয়েছে তার উপর নির্ভর করে সিউডোমোনাস সংক্রমণের বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায় যেমনমূত্রনালী মূত্রে রক্তের উপস্থিতি মূত্রত্যাগের সময় জ্বালা ও ব্যথার অনুভূতি ঘোলা রঙের মূত্রকানে ব্যথা শোনার সমস্যা কান থেকে হলুদ/সবুজ ক্ষরণ এবং কানে অস্বস্তি বা চুলকানিমাথা যন্ত্রণা জ্বর গলা ব্যথা ত্বকে ফুসকুড়িঘাড়ের লসিকা গ্রন্থি ফুলে ওঠা যে কারণগুলি একজন ব্যক্তির মধ্যে সিউডোমোনাস সংক্রমণের প্রবণতা বৃদ্ধি করে সেগুলি নিচে দেওয়া হলঅস্ত্রোপচার বা পোড়ার ক্ষতইউরিনারি ক্যাথেটার জাতীয় যন্ত্রের ব্যবহারকৃত্রিম শ্বাসযন্ত্র ব্যবহারকারী ব্যক্তিকোন রোগ বা ইমিউনোসাপ্রেস্যান্ট থেরাপির ফলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়া বিস্তৃত ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার পরে এই সংক্রমণ নির্ণয়ের জন্য সাধারণত টিস্যু বায়োপ্সি কমপ্লিট ব্লাড কাউন্ট বুকের এক্সরে ইউরিন মাইক্রোস্কোপি ও কালচার প্রভৃতি পরীক্ষাগুলি করা হয়ে থাকে নিচের নির্ণয় প্রক্রিয়াগুলি এই ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণের ক্ষেত্রে কার্যকরীফ্লুওরেসিন টেস্টউডের অতিবেগুনি আলোর তলায় পর্যবেক্ষণ করলে আক্রান্ত অঞ্চলগুলি জ্বলজ্বল করবেপায়োসায়ানিন ফরমেশনবেশিরভাগ ক্ষেত্রে পায়োসায়ানিন তৈরি হয় যার ফলে পুঁজের রং হয় নীলচে সবুজসিউডোমোনাস সংক্রমণের চিকিৎসা হলক্ষতের ডিব্রাইডমেন্ট (মৃত টিস্যু সরিয়ে ফেলা)ইমিউনোথেরাপি এর মধ্যে আছে টিকাকরণঅ্যান্টিবায়োটিক জাতীয় ওষুধ সাধারণত যে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি দেওয়া হয় তা হলকারবেনিসিলিনটবরামাইসিনজেন্টামাইসিনসিলভার সালফাডায়াজিনসিপ্রোফ্লক্সাসিনসিউডোমোনাস সংক্রমণ প্রতিরোধের উপায়গুলি হলযথাযথ নির্বিজকরণ প্রণালী মেনে চলাযথাযথ বিচ্ছিন্নকরণ পদ্ধতির ব্যবহারক্যাথেটার ও অন্যান্য যন্ত্রগুলিকে পর্যাপ্ত পরিমাণে পরিষ্কার রাখাক্ষতের চিকিৎসায় টপিক্যাল অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল ক্রিম ও লোশনের ব্যবহার প্রস্টাইটিস হল একটি সাধারণ অবস্থা যা প্রোস্টেট গ্রন্থির ফোলার (জ্বালা করা) দ্বারা চিহ্নিত করা যায় যা বেশিরভাগ ক্ষেত্রে সংক্রমণের জন্য হয় প্রস্টাইটিস অস্বাস্থ্যকর পরিবেশের জন্য যে কোন বয়সের পুরুষকেই প্রভাবিত করতে পারে প্রস্টাইটিসের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি প্রায়শই প্রোস্টেট ক্যান্সার বা প্রোস্টেটের বেড়ে যাওয়ার সাথে একই রকম থাকে কিন্তু অবস্থাগুলি সম্পূর্ণভাবে আলাদা হয় কিছু লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হলপ্রস্রাব করতে সমস্যা হওয়া বেদনাদায়ক প্রস্রাব বা প্রস্রাবের প্রবাহ আটকে আটকে যাওয়াশ্রোণীর জায়গাতে ব্যথা অথবা মলদ্বার সহ প্রোস্টেটের জায়গার আশেপাশে ব্যথাকিছু মুহূর্তের পর পরই প্রস্রাব করার প্রয়োজনীয়তা মাঝে মাঝে রক্ত প্রস্রাব হতে পারেব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণের ক্ষেত্রে জ্বর বমি বমি ভাব এবং অন্য ফ্লু এর মতো উপসর্গগুলিও হতে পারে প্রস্টাইটিসকে তার কারণ উপর নির্ভর করে বিভিন্ন বিভাগে শ্রেণীবদ্ধ করা হয় সেইগুলি হলদীর্ঘদিনের প্রস্টাইটিসএই ক্ষেত্রে উপসর্গগুলি আস্তে আস্তে উন্নত হয় এবং অনেক লম্বা সময়ের জন্য থাকে দীর্ঘদিনের প্রস্টাইটিস কোন সংক্রমণের জন্য হয় না এবং প্রায় সহজেই সারানো যায় দীর্ঘদিনের প্রস্টাইটিসের বৃদ্ধির জন্য প্রধান কারণগুলির মধ্যে কিছু হল প্রস্টাইটিসের ইতিহাস দীর্ঘদিনের প্রস্টাইটিস মাঝ বয়সী থেকে বৃদ্ধ পুরুষদের মধ্যে সাধারণ সমস্যাজনক অন্ত্রের উপসর্গ সার্জারির সময় ক্ষতি হওয়া তীব্র প্রস্টাইটিস প্রস্টাইটিসের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলিকে দেখে ডাক্তার হয়তো কিছু পরীক্ষা করতে বলতে পারেন যা অবস্থাটি আসলে প্রস্টাইটিস কিনা তা সনাক্ত করতে সাহায্য করে নীচে প্রস্টাইটিসের জন্য কিছু সাধারণ এবং নির্ণায়ক পরীক্ষা দেওয়া হলশারীরিক পরীক্ষাগুলির মধ্যে রয়েছে একটি ডিজিটাল রেক্টাল পরীক্ষামূত্রনালীর সংক্রমণ পরীক্ষা করার জন্য ইউরিনালাইসিসপ্রোস্টেটে কোন ফোলা ভাব বা অস্বাভাবিক বৃদ্ধি আছে কিনা তা দেখার জন্য ট্রান্সরেক্টাল আল্ট্রাসাউন্ডইউরোলজিস্ট প্রতিটি নির্গমনের শুক্রাণু এবং সিমেনের পরিমান নির্ণয় করতে এবং রক্ত আছে কিনা দেখার জন্য অথবা সংক্রমণের লক্ষণগুলি নির্ণয়ের জন্য সিমেনের বিশ্লেষণও করতে পারেনসিস্টোস্কোপিক বায়োপ্সি ইউরিনারি ব্লাডারকে দেখতে এবং প্রোস্টেট থেকে টিস্যুর নমুনা সংগ্রহ করতে করা হয় যাতে প্রদাহের যেকোন লক্ষণ দেখা যায়প্রাথমিক পর্যায়ে নির্ণয় করলে প্রস্টাইটিসের সাধারণত সহজে চিকিৎসা করা যেতে পারে ব্যাক্টেরিয়াল সংক্রমণকে ঠিক করার জন্য কিছু অ্যান্টিবায়োটিকের দরকার হয় ব্যক্তিকে পেইনকিলার এবং অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি ওষুধগুলির পরামর্শ দেওয়া হয় হাল্কা অবস্থার ক্ষেত্রে প্যারাসিটামল এবং ইবুপ্রোফেন সবচেয়ে সাধারণভাবে দেওয়া হয় কিন্তু যদি অবস্থাটি তীব্র হয় বা ব্যথা আরও বেড়ে যায় তাহলে কড়া পেইনকিলার যেমন অ্যামিট্রিপ্টিলিনও দেওয়া হয় অন্যান্য ওষুধগুলির মধ্যে রয়েছে মাসেল রিল্যাক্সেন্স ডাক্তার ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য গরম জলে স্নান করার বা প্রভাবিত জায়গায় গরম জলের ব্যাগ ব্যবহার করার উপদেশও দেন পুরুষদের মধ্যে দেখা দেওয়া সবচেয়ে সাধারণ প্রকৃতির ক্যান্সারের মধ্যে অন্যতম প্রস্টেট ক্যান্সার হলো প্রজননতন্ত্রের প্রস্টেট নামে পরিচিত ছোটো গ্রন্থিতে কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধি প্রস্টেট ক্যান্সারে ততক্ষণ পর্যন্ত কোনও লক্ষণ অথবা উপসর্গ নাও দেখা দিতে পারে যতক্ষণ না চরম পর্যায়ে পৌঁছোচ্ছে কিছু ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কিছু লক্ষণকে অন্তর্নিহিত ক্যান্সারের ইঙ্গিত হিসেবে ধরা হয় এই লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হলপ্রস্রাবের সময় ব্যথা বা জ্বালা ভাবঋজুকরণে সমস্যাপ্রস্রাব অথবা বীর্য দিয়ে রক্ত বেরনোমলদ্বারে ব্যথা অথবা শ্রোণী উরু বা পাছার অঞ্চলেফোঁটা ফোঁটা প্রস্রাব পড়াপ্রস্রাব এক ধারায় শুরু করতে সমস্যা প্রস্টেট ক্যান্সার হওয়ার প্রধান কারণ স্পষ্ট নয় তবে এমন অনেক সাধারণ কারণ রয়েছে যা প্রস্টেটে ক্যান্সারের কার্যকরী প্রক্রিয়ার ইঙ্গিতবাহী ডিএনএতে মিউটেশনের ফলে প্রস্টেটে কোষের অনিয়ন্ত্রিত বৃদ্ধিত হয় যার ফলে এই অবস্থা দেখা দেয়আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল অঙ্কোজিন ও টিউমার সাপ্রেসর জিনের মধ্যে ভারসাম্যহীনতা অঙ্কোজিন শরীরে ক্যান্সারযুক্ত কোষের বৃদ্ধির জন্য দায়ী আর টিউমারের বৃ্দ্ধি প্রতিরোধ করার জন্য টিউমার সাপ্রেসর জিন সঠিক সময়ে ক্যান্সারযুক্ত কোষের বৃদ্ধিকে মন্থর করা অথবা তাকে নষ্ট করে দেয় প্রস্টেট ক্যান্সারের উপস্থিতির জন্য চূড়ান্ত নির্ধারক এবং সুনিশ্চিত পরীক্ষা হল কোনও মূত্ররোগ বিশেষজ্ঞের করা বায়োপসিঅন্যান্য পরীক্ষাগুলি হল ডিজিটাল রেক্টাল এক্সাম (ডিআরই) টেস্ট এবং প্রস্টেটস্পেসিফিক অ্যান্টিজেন (পিএসএ) টেস্ট তবে এগুলি প্রস্টেটে ক্যান্সার আছে কি না তা নিশ্চিত করে না কারণ বৃদ্ধি অন্য কোনও সংক্রমণের ফলে অথবা ক্যানসারবিহীন বিস্তারের জন্যও হতে পারেপ্রস্টেট ক্যান্সারের চিকিৎসা অধিকাংশ ক্ষেত্রেই সফল হয় যেসমস্ত ওষুধ এবং চিকিৎসা প্রদান করা হয়রেডিয়েশন থেরাপি ডাক্তার গামারশ্মির মতো সরাসরি বিকিরণকে ক্যান্সার কোষের ওপর ফেলেনসার্জারি এই ধরনের পরিস্থিতিতে প্রাথমিক পর্যায়ে যখন টিউমার ছড়িয়ে পড়েনি এবং ছোটো থাকে তখন অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে বাদ দেওয়ার চেষ্টা করা হয়কেমোথেরাপি ক্যান্সার যখন চরম পর্যায়ে পৌঁছে ছড়িয়ে পড়ে তখন কেমোথেরাপি চিকিৎসার জন্য সহায়কওষুধ ক্যান্সারযুক্ত কোষের বৃদ্ধি হ্রাস করতে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ দেওয়া হতে পারে অকালপক্ক বয়ঃসন্ধি বা প্রিকসিয়াস পিউবারটি হল একটি চিকিৎসাজনিত অবস্থা যেখানে বয়ঃসন্ধির লক্ষণগুলি কোনও ব্যক্তির মধ্যে স্বাভাবিক সময়ের আগে দেখা দেয় যদি মেয়েদের মধ্যে 8 বছরের কম এবং ছেলেদের মধ্যে 9 বছরের কম বয়সে এটি প্রকাশ পায় তখন তাকে অকালপক্ক বয়ঃসন্ধি ধরা হয় প্রাথমিক লক্ষণের মধ্যে বয়ঃসন্ধিকালের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত পরিবর্তনের ঘটনা অন্তর্ভুক্ত মেয়েদের ক্ষেত্রে স্তনের বৃদ্ধি যা একতরফা হতে পারে একই সঙ্গে বগলে লোমও উঠতে পারে যোনির বৃদ্ধি হতে পারে আবার নাও হতে পারে ঋতুস্রাব প্রথমবার হওয়ার ব্যাপার পরবর্তীকালের ঘটনা যা স্তন বৃদ্ধির প্রায় 23 বছর পরে ঘটে বয়ঃসন্ধিকালের আগে মেয়েদের অত্যধিক ব্রণ হতে পরে ছেলেদের ক্ষেত্রে অন্ডকোষ বৃদ্ধি পায় এবং তারপর অণ্ডথলি ও লিঙ্গের বৃদ্ধি হয় তার পরপরই আবেগ বৃদ্ধি ব্রণ গলার স্বরে পরিবর্তন এবং অন্যান্য আনুষাঙ্গিক যৌন চরিত্রগত পরিবর্তনগুলি ঘটতে পারে ছেলেদের এবং মেয়েদের উভয় ক্ষেত্রেই যৌনাঙ্গে লোম ওঠা সাধারণ ব্যাপার বয়ঃসন্ধিকাল সাধারণ ঘটনা যা বড়ো হওয়ার লক্ষণ কোন বয়সে এর সূত্রপাত হবে তা একাধিক কারণের উপর নির্ভর করে এটি জিনগতভাবে নির্ধারিত ভাইবোন অথবা অভিভাবকের মধ্যে অকালপক্ক বয়ঃসন্ধির উপস্থিতি দ্বিতীয় সন্তানের মধ্যে এটি হওয়ার সম্ভবনা বাড়িয়ে দেয় অন্যথায় হাইপোথ্যালামাসে টিউমার অনেকসময় অ্যান্ড্রোজেন বা পুরুষদেহের বৈশিষ্ট্যকে প্রকটতর করে সেই রাসায়নিকের উত্থানের জন্য দায়ী হতে পারে অকালপক্ক বয়ঃসন্ধিতে যুক্ত রয়েছে ইস্ট্রোজেন (স্ত্রীহরমোন) প্রজেস্টেরন এবং টেস্টোস্টেরনের মতো হরমোনের শীঘ্র উৎপাদনের ফলে ছেলে এবং মেয়েদের মধ্যে যথাসময়ের আগে যৌনতার বিকাশ হতে দেখা যায় শারীরিক পরিবর্তনগুলির প্রকাশ এতোটাই সুক্ষ হয় যে শুরুতে কারও নজরে নাও পড়তে পারে সুনিশ্চিত হওয়ার জন্য শরীরে অ্যান্ড্রোজেনের মাত্রা জানতে বায়োকেমিক্যাল বা জৈবরাসায়নিকের অনুসন্ধান প্রয়োজন নির্ণয়ের জন্য এক্সরে এবং হরমোন উদ্দীপনা পরীক্ষা করা হতে পারে ছেলেদের মধ্যে টেস্টোস্টেরন এবং মেয়েদের মধ্যে এস্ট্রাডিয়লের বর্ধিত মাত্রা অকালপক্ক বয়ঃসন্ধির সঠিক সূচক এছাড়াও থাইরয়েডের মাত্রার মূল্যায়ন করা প্রয়োজনচিকিৎসা কারণের উপর নির্ভরশীল টিউমারের ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার প্রয়োজন অন্যথায় গোনাডোট্রোপিনমুক্ত হরমোনের প্রতিহতকারী দিয়ে হরমোনের ভারসাম্য ফেরানো হয় অবস্থা মেনে নেওয়ার ক্ষেত্রে অর্থাৎ 89 বছর বয়সের শিশুদের মধ্যে অকালপক্ক বয়ঃসন্ধির উপসর্গের চিকিৎসা না করে এবং শুধুমাত্র তার ওপর নজর রাখা হতে পারে পোস্টট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসর্ডার (পিটিএসডি) একটি মোটামুটি সাধারণ মানসিক অবস্থা সেইসমস্ত ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায় যাঁরা নিজের জীবনে গভীর দুশ্চিন্তাজনক ঘটনার সাক্ষী থেকেছেন এই সমস্ত ঘটনা কিছু মানুষের মননে গভীর প্রভাব ফেলে এবং তাদের রোজকার জীবনে ব্যাঘাত সৃষ্টি করতে পারে রোগী মানসিক অবসাদ অথবা প্যানিক অ্যাটাকের মতো অন্যান্য মানসিক বিকারের সঙ্গে এই অবস্থা উপলব্ধি করতে পারেন সবচেয়ে খারাপ অবস্থায় পিটিএসডি আত্মহত্যার প্রবৃত্তিকে উদ্দীপ্ত করতে পারে এটি মনস্তাত্ত্বিক প্রভাবের একটি শ্রেণিবিন্যাস সহ মানসিক রোগ প্রায় সবসময় যে লক্ষণগুলি এর সঙ্গে যুক্ত তা নিচে উল্লেখ করা হলমানসিকচাপ যুক্ত ঘটনার উপলব্ধি অথবা প্রত্যক্ষ করার ইতিহাসদুঃস্বপ্ন এবং (অথবা) ফ্ল্যাশব্যাক সহ কোনও ঘটনার স্মৃতি পুনরায় অনুভব করা করাসেই সমস্ত পরিস্থিতি স্থান এবং ব্যক্তিদের এড়িয়ে চলার চেষ্টা যা যন্ত্রণাদায়ক ঘটনার কথা মনে করিয়ে দিয়ে দৈনন্দিন জীবনের কাজকর্মকে ব্যাহত করতে পারেবিরক্তিভাব মনোযোগে সমস্যা এবং ঘুমে ব্যাঘাতের মতো হাইপারঅ্যারাউওজাল উপসর্গএই ঘটনা বিভিন্ন রকম হতে পারে অপর কোনও ব্যক্তির মৃত্যু/গুরুতর আঘাতের ঘটনা প্রত্যক্ষ করা থেকে শুরু করে প্রাণঘাতী দুর্ঘটনার অঙ্গ থাকা অন্তরঙ্গ প্রকৃতির উৎপীড়নের সম্মুখীন হওয়া যৌন নির্যাতনের শিকার হওয়া প্রাকৃতিক দুর্যোগ প্রত্যক্ষ করার অভিজ্ঞতা অস্ত্রশস্ত্র দেখিয়ে ভয় দেখানোর মতো ব্যাপার সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ হিংসামূলক অপরাধ এবং দুর্ব্যবহার সামরিক যুদ্ধ প্রাকৃতিক দুর্যোগ গুরুত্বর দুর্ঘটনা অথবা ব্যক্তিগতভাবে হিংসাত্মক হামলার শিকার হওয়ার মতো ঘটনায় জর্জরিত যুগে মানসিক আঘাত পাওয়ার ঘটনা অস্বাভাবিক নয় এই ধরনের মানসিক চাপযুক্ত ঘটনায় আমরা অনেকেই গভীরভাবে আহত হই কিন্তু কিছু দিন বা সপ্তাহ পরই দুঃখ সামলে উঠি এবং রোজকার জীবন ফের শুরু করিআমাদের শরীর মানসিক আঘাতজনিত ঘটনায় হওয়া মানসিক অবসাদের প্রতিক্রিয়ায় ভিন্নভাবে সাড়া দেয় সাধারণত মানসিক চাপ সামলাতে মানুষ একটি লক্ষ্যে কাজ করেন তবে কিছু ব্যক্তি প্রচেষ্টা ছেড়ে দেন এবং আবেগ বা ভয়কে ভেতরে দমিয়ে রাখেন এর ফলে পিটিএসডি হতে পারে নিজে তৈরি করা নির্দিষ্ট কিছু রিপোর্ট অথবা পেশাদার ডাক্তারের সহায়তায় প্রশ্নাবলী এবং মানদণ্ডের মূল্যায়নের মাধ্যমে রোগ নির্ণয় করা যেতে পারে আর তা রোগীর আবেগপ্রবণতাকে মাথায় রেখে খুব সংবেদনশীলভবে করা আবশ্যক চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে কাউন্সেলিং বা পরামর্শ দান কগনিটিভ বিহেভিরিয়াল থেরাপি গ্রুপ থেরাপি বিশ্রামের কৌশল এবং বন্ধুবান্ধব ও পরিবারের কাছ থেকে প্রচুর পরিমাণে সহায়তা ওষুধ দেওয়া হতে পারে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই অ্যান্টিডিপ্রেসান্ট দেওয়া হয় তবে তা অবস্থার তীব্রতার উপর নির্ভর করে অষ্টিওপোরোসিস এমন একটি রোগ যাতে শরীরের হাড় দুর্বল ও ভঙ্গুর হয়ে যায় ফলে তা চিড় ধরা প্রবণ হয়ে পড়ে মেনোপজ অর্থাৎ ঋতুবন্ধতা মহিলাদের মধ্যে সাধারণত 4552 বছর বয়সের মধ্যে হয় এবং নানান হরমোনাল পরিবর্তনের সঙ্গে যুক্ত হরমোনাল পরিবর্তনের ফলে হাড়ে ক্যালসিয়াম শোষণের মতো শরীরে বেশকিছু প্রভাব পড়ে মেনোপজের পর হাড়কে সুরক্ষাদানকারী ইস্ট্রোজেনের কার্যকারিতা বন্ধ হয়ে যাওয়ায় মহিলারা অষ্টিওপোরোসিস প্রবণ হয়ে পড়েন রোগটি বিশেষত লুকিয়েই থাকে যতক্ষণ পর্যন্ত না তা হাড় ভাঙা বা হাড়ে চিড় ধরা হিসেবে প্রকাশ পাচ্ছে অথবা অন্যান্য উদ্দেশে করা এক্সরে বা বডি স্ক্যানে তা ধরা পড়ছে আরও খারাপ ব্যাপার হল সুক্ষ চিড় ধরা নজরে নাও আসতে পারে এর একটি বিশেষ উদাহরণ হল ভার্টিব্রাল ফ্র্যাকচার যাতে পিঠে মৃদু ব্যথা ছাড়া বেশি কিছু অনুভূত হয় না আর নড়াচড়া করলেই তা ছড়িয়ে পড়ে সামান্য আঘাতেও ফ্র্যাকচার হতে পারে একে ফ্র্যাজিলিটি ফ্র্যাকচার বলা হয় বয়সকালে মেরুদণ্ডে একাধিক ফাটলের ফলে রোগীর উচ্চতায় হ্রাস ঘটতে পারে এছাড়া হাড়ে দুর্বলতার ফলে দুর্বল দেহভঙ্গির জন্য মহিলাদের মধ্যে কুঁজ বা কাইফোসিস দেখতে পাওয়া যায় মেনোপজের আগে ওভারি বা ডিম্বাশয়ে উৎপন্ন হওয়া হরমোন হাড়ের গঠন ও পুনরায় শোষণে সামঞ্জস্য বজায় রাখতে সাহায্য করে কিন্তু বয়সের সঙ্গে ডিম্বাশয়ের কার্যকারিতা ও হরমোন কমতে থাকে ডিম্বাশয়ের হরমোনের স্বল্প মাত্রার কারণে শরীরে হাড়ের পুনঃশোষণের হার বেড়ে যায় আর উল্টোদিকে হাড়ের অবক্ষেপণের মাত্রা অপেক্ষাকৃতভাবে মন্থর হয়ে পড়ায় হাড় দুর্বল হয়ে যায় এভাবে হাড়ের ভঙ্গুরতা বেড়ে যায় এবং মেনোপজের পর প্রথম কয়েক বছরে হাড়ের জোর উল্লেখযোগ্য ভাবে কমে যায়যেসমস্ত রোগীরা দেহভঙ্গি ও ভারসাম্য ঠিক রাখতে না পারার কারণে অত্যধিক পড়ে যান তাঁদের হাড় ভাঙার ঝুঁকি বেশি থাকে শারীরিক কাজকর্মের অভাবও হাড় ভঙ্গুরতার ঝুঁকি নিয়ে আসে মদ্যপান ও ধূমপান অতিরিক্ত ঝুঁকির কারণ রক্তে ক্যালসিয়াম ও ম্যাগনেসিয়ামের পরিবর্তিত মাত্রা অ্যানিমিয়া থাইরয়েডের ত্রুটিপূর্ণ কাজকর্ম ভিটামিন ডির অভাব এবং লিভারের ওপর মদ্যপানের কুপ্রভাব থেকে অস্টিওপোরোসিস হতে পারে সেজন্য থাইরয়েডের কার্যকারিতা পরীক্ষা এবং রক্তরসে ক্যালসিয়াম ভিটামিন ডি ও ম্যাগনেসিয়ামের মাত্রা মূল্যায়নের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হতে পারে রোগীর দেহে হাড় ভাঙার সন্দেহ হলে এক্সরে বাধ্যতামূলক 15 ইঞ্চির বেশি উচ্চতা হ্রাস পেলে এক্সরে ইমেজিং পরীক্ষার মাধ্যমে পর্যবেক্ষণ করা হয়বোন ডেনসিটি স্ক্যান বা ডিইএক্সএ স্ক্যান নামে পরিচিত ইমেজিং অধ্যয়নের সাহায্যে অস্টিওপোরোসিস এবং তার তীব্রতা রয়েছে এমন হাড়গুলিকে সনাক্ত করা হয়এর চিকিৎসায় রয়েছে হাড় মজবুত করার জন্য ক্যালিসিয়াম ও ভিটামিন ডি সাপ্লিমেন্ট এবং হাড়ের অবক্ষেপণের হার কমাতে ওষুধ দেওয়া হয় যদিও হরমোন প্রতিস্থাপনের পরামর্শ দেওয়া হয় না হাড়ে খনিজ উপাদানের ঘনত্বের অনবরত তদারকি করতে হয় এবং পড়ে গিয়ে অথবা আঘাত পেয়ে হাড় ভাঙার ঘটনা এড়াতে রোগীকে দৈনন্দিন জীবনে সতর্কতা অবলম্বন করার পরামর্শ দেওয়া হয় মহিলাদের মধ্যে হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে সৃষ্ট একগুচ্ছ উপসর্গের সমষ্টিকে বলে পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম যাকে ছোট করে পিসিওএস বলা হয় এটি সাধারণত 1835 বছর বয়সী প্রজনন বয়সের সময়ের মধ্যে যে মহিলারা আছেন তাদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় রোগটির একটি বিশিষ্ট উপসর্গ থেকে এর নামের উৎপত্তি হয়েছে আক্রান্ত রোগিণীর অন্তত একটি ওভারি বা ডিম্বাশয়ে 12 বা তার বেশি ফলিকল তৈরি হয় (সবসময় নয়) এবং ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (এফ এস এইচ) ও লিউটিনাইজিং হরমোন (এল এইচ) প্রভৃতি হরমোনের মাত্রায় পরিবর্তন দেখা যায় এই রোগের উপসর্গগুলি হলো এমেনোরিয়া যার অর্থ হলো ঋতুস্রাব না হওয়া ডিসমেনোরিয়া যার অর্থ হলো যন্ত্রণাদায়ক ঋতুস্রাব অনিয়মিত ঋতুস্রাব হিরসুটিজম যার অর্থ হলো দেহে ও মুখে অতিরিক্ত লোমের উপস্থিতিপিম্পল বা ব্রণ কোমরের কাছে ব্যথা গর্ভধারণের সমস্যা স্থূলত্ব যাতে পেটে চর্বিসঞ্চয়ের সম্ভাবনা থাকে পেরিফেরাল ইনসুলিন প্রতিরোধ বন্ধ্যাত্বরোগীর পরিবারে মাসিকসংক্রান্ত সমস্যা এড্রেনাল এনজাইমের অভাব বন্ধ্যাত্ব স্থূলত্ব এবং মেটাবলিক সিনড্রোম বা ডায়াবিটিসের ইতিহাস থাকতে পারে অথবা রোগী অতিরিক্ত রক্তপাত বা দীর্ঘস্থায়ী ঋতুস্রাবের অভিযোগ করতে পারে পিসিওএস রোগটির জিনগত প্রবণতা দেখতে পাওয়া যায় এবং বাবা ও মা দুজনের থেকেই অটোজমাল ডমিনেন্ট জিন হিসাবে এটি পরবর্তী প্রজন্মে বাহিত হয় রোগীদের শরীরে অধিক মাত্রায় এন্ড্রোজেন (পুরুষ হরমোন) উপস্থিত থাকে বিশেষত টেস্টোস্টেরন এই হরমোনগুলি ডিম্বাণুচক্রের বিন্যাসে ব্যাঘাত ঘটায় এবং বিভিন্ন উপসর্গের সৃষ্টি করে হরমোনগুলির ফলে ফলিকলের বিকাশ বাধাপ্রাপ্ত হয় এই অপরিণত ফলিকলের জন্যই ডিম্বাশয়কে দেখে মনে হয় তা তরলপূর্ণ সিস্টে ভর্তি এই রোগটি নির্ণয়ের জন্য পুঙ্খানুপুঙ্খ চিকিৎসার ইতিহাস সংগ্রহ ও শারীরিক পরীক্ষার দরকার ল্যাবরেটরি পরীক্ষার মধ্যে আছে থাইরয়েডের ক্রিয়ার পরীক্ষা এফএসএইচ প্রোলাক্টিন এবং এলএইচ মাত্রা টেস্টোস্টেরন ও রক্তশর্করার মাত্রা এগুলির আগে আল্ট্রাসোনোগ্রাফীর মত ননইনভেসিভ ইমেজিং প্রক্রিয়া ব্যবহার করা যেতে পারে ডিম্বাশয়ে সিস্টগুলির উপস্থিতি দেখতে লাগে অনেকটা মুক্তোর মালার মতএর চিকিৎসা হল রোগীকে আরো স্বাস্থ্যকর জীবনযাপনে উৎসাহী করে তোলা স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ওজনহ্রাস নিয়মিত শরীরচর্চা প্রভৃতি পরিবর্তনের মাধ্যমে হরমোনের ভারসাম্য ফিরিয়ে আনতে সাহায্য করে এছাড়াও চিকিৎসক হরমোন থেরাপির নির্দেশ দিতে পারেন প্রাকডায়াবিটিস অথবা ইনসুলিন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে মেটফর্মিন জাতীয় ইনসুলিন সেনসিটাইজিং ওষুধও সাহায্য করে ব্রণ হল ত্বকের সাধারণ একটি সমস্যা এর বৈশিষ্ট্য হল ক্ষত সৃষ্টি করা যা পিম্পল এবং ব্ল্যাকহেড বা হোয়াইটহেড নামেও পরিচিত যাতে খুব সাধারণত মুখকাঁধ গলা পিঠ এবং বুক আক্রান্ত হয় এই সমস্যার কারণে স্থায়ী দাগ থেকে যেতে পারে ত্বকের উপরে এবং ত্বকের রুপ নষ্ট করে দেয় যদিও এটি স্বাস্থ্যের গুরুত্বর কোন ক্ষতি করে না ব্রণ বিশেষ করে মহিলাদের মধ্যে এবং বিশেষত বয়ঃসন্ধিকালে দেখা যায় যেসকল আকারে ব্রণ ত্বকে প্রকাশ পায় সেগুলি হলহোয়াইটহেড বা ব্ল্যাকহেড বা ছোট ফোলাভাব (প্যাপুলস) সৃষ্টিএকটি ছোট ফুসকুড়ি (পাস্টুল) বা নীচের দিকে লালচে রঙের এরকম ব্রণ এবং যাতে পূঁয ভর্তি থাকেযন্ত্রণাদায়ক ছোট গোলাকার পিন্ড (গুটি) যা ত্বকের গভীরে অবস্থিত এবং ক্ষতচিহ্নের সৃষ্টি করেগর্ত বা সিস্ট যা মূলত পুঁজ দিয়ে ভর্তি থাকে এবং নিরাময় হয়ে ত্বকে ক্ষতচিহ্ন তৈরী করতে পারে একাধিক কারণ রয়েছে ব্রণ হওয়ার জন্য সেগুলি হলপিঅ্যাকনেস ব্যাকটেরিয়ার দ্রুত বৃদ্ধিপুরুষ (অ্যান্ড্রোজেন) এবং মহিলাদের (ইস্ট্রোজেন) শরীরে যৌন হরমোনের পরিবর্তন ফলে লোমকূপে প্রদাহ তৈরী হয় এবং প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হয়জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধের ব্যবহারের পরিবর্তন (শুরু করা বা বন্ধ করা) এবং গর্ভাবস্থার কারণে শরীরে হরমোনের পরিবর্তন হয়পলিসিস্টিক ওভারিয়ান রোগ (পিসিওডি)জীবনশৈলীগত কারণগুলি হল মানসিক চাপ অস্বাস্থ্যকর খাদ্যতালিকা শরীরচর্চার অভাব আক্রান্ত অংশের সম্পূর্ণ পরীক্ষা ব্রণ নির্ণয়ে সাহায্য করে ব্রণ হওয়ার কারণ নির্ণয় করার জন্য নীচে উল্লেখিত পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়রক্ত পরীক্ষা পাশাপাশি পিসিওএস সনাক্ত করার জন্য আল্ট্রাসাউন্ড স্ক্যানের ব্যবহারব্রণ নিরাময় করতে দীর্ঘ চিকিৎসা চালাতে হয় যেখানে সেরে উঠতে অনেক সময় লাগে এবং মূলত প্রয়োজন ঠিকমত ত্বকের যত্ন নেওয়াব্রণ নিয়ন্ত্রণ করতে কার্যকর কিছু পদ্ধতি চিকিৎসক নির্ধারণ করেন যেগুলি হলঅ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার যা সেবনের মাধ্যমে বা সাময়িকভাবে ( সরাসরি ত্বকে প্রয়োগ করা) প্রয়োগের দ্বারা ত্বকে প্রদাহের প্রভাব কমাতে এবং ব্রণ সৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়া কমাতে সাহায্য করেস্যালিসিলিক অ্যাসিড এবং বেনজয়েল পারক্সাইডের সাময়িক প্রয়োগ হালকা ব্রণর চিকিৎসায় সাধারণত ব্যবহৃত হয়আইসোট্রেটিনোইন ট্যাবলেট গুরুতর ব্রণর ক্ষেত্রে এটির ব্যবহার সর্বাধিক ফলপ্রসু চিকিৎসা লোমকূপকে উন্মুক্ত করতে এবং পুনরায় প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হওয়া প্রতিরোধ করতে ব্যবহৃত হয় যার ফলে তৈলাক্তভাব কম হয় এবং ত্বককে শীতলতা প্রদান করেআলো বা বায়োফোটোনিক থেরাপি ব্যবহার করা হয় হালকা থেকে মাঝারি প্রদাহজনক ব্রণের চিকিৎসায়হরমোন নিয়ন্ত্রণ থেরাপি যেখানে ইস্ট্রোজেনের মাত্রা লঘু থেকে লঘুতর থাকে এবং মহিলাদের ব্রণের চিকিৎসায় এন্ড্রোজেননাশক গর্ভনিরোধক ওষুধ দেওয়া হয়ে থাকেসাময়িকভাবে বা সেবনের দ্বারা রেটিনোয়েডের ব্যবহার লোমকূপ উন্মুক্ত করতে এবং পাশাপাশি নতুন প্রতিবন্ধকতা দূর করার চিকিৎসায় ব্যবহার হয়রেটিনয়েড সাথে বেনজয়েল পারক্সাইডের সংযোজিত থেরাপিও ব্যবহার করা যেতে পারে হালকা সাবান মুক্ত মুখে ব্যবহারের ক্লেনজার দিয়ে প্রতিদিন দুবার মুখ পরিষ্কার করামুখ পরিষ্কার করার জন্য পছন্দ করুন এমন ক্লেনজার যাতে রুক্ষ পদার্থ (ক্ষয়কারী ঘর্ষক) এবং অ্যালকোহল ব্যবহার করা হয় নিমুখ পরিষ্কার করার ক্লেনজারে পিএইচ মাত্রা সঠিক অনুপাতে থাকতে হবে ত্বকের ক্ষুদ্র গর্ত (লোমকূপ) বন্ধ করে না এমন পরীক্ষিত এবং যাচাই করা দ্রব্য ব্যবহার করা উচিত ব্রণ হল একটি ছোট ফুসকুড়ি যা সিবেসাস গ্রন্থি আবদ্ধ হয়ে যাওয়া বা লোমকূপে সংক্রামণের কারণে সৃষ্টি হয় নাকের ভিতরের ত্বকে অসংখ্য লোমকূপ সারিবদ্ধভাবে থাকার ফলে ব্রণ হওয়া এমন কিছু অস্বাভাবিক ঘটনা নয় এটি দৃষ্টিগত হওয়া অস্বস্তিকর নয় তবে ব্যথাটি সহ্য করা আক্রান্ত ব্যক্তির পক্ষে কিছুটা কষ্টদায়ক হতে পারে ফুসকুড়িগুলি সাধারণত ছোট আকারের হয় এবং এটি নাকের ভিতরে ছোট ফোলাভাব সৃষ্টি করে ও যার থেকে মাঝে মাঝে হালকা ব্যথাও হয় তবে যদি ফুসকুড়িটি কিছু তীক্ষ্ন বস্তু দিয়ে খোঁচানো হয় তাহলে এটি থেকে ব্রণ হতে পারে ও শেষ পর্যন্ত তা ফোড়ার আকার নিতে পারে ফোড়া খুব বেদনাদায়ক হয় ও পরে এর থেকে পুঁযের মতো তরল নির্গত হতে পারে আক্রান্ত অঞ্চলটিতে চুলকানি লালচেভাব এবং তাপ উৎপাদনের মতো উপসর্গগুলি দেখা দিতে পারে নাকে ব্রণ হওয়ার অন্যতম একটি সাধারন কারণ হল সংক্রামিত লোমকূপ যা লোমফোড়া বা বিষফোঁড়া নামেও পরিচিত অন্যান্য কারণগুলি হল প্রদাহদায়ক লোমকূপ বা ফলিকিউলিটিস এবং সেলুলাইটিস এর মতো ত্বকের সংক্রমণ শরীরের ভিতরের দিকে চুল যদি বাড়তে থাকে তাহলেও ব্রণ হতে পারে একজন বিশেষজ্ঞ বর্তমান উপসর্গ ও নাসিকাগহ্বর বা নাকের ভিতরটি পরীক্ষা করার পরেই নির্ণয় করতে সক্ষম হন রোগটির অধিকাংশ ব্রণ কিছুদিন পর নিজে থেকেই ভালো হয়ে যায় ব্রণ ভালো হতে 710 দিন সময় লাগতে পারে তবে যদি স্থানটিতে পুঁয হয় বা ব্যক্তির শরীরে যদি জ্বর থাকে তাহলে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার বিশেষত 5 দিন অ্যান্টিবায়োটিক খেতে দেওয়া হয় এক্ষেত্রে অধিকাংশ ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকের দ্বারাই এটি ভালো হয় যায় তবেকিছু ক্ষেত্রে পুঁজ বের করতে হয় চিকিৎসা না হলে সংক্রামিত ফুসকুড়ি ঝুঁকিপূর্ণ হতে পারে ও যেহেতু মস্তিষ্কের সাথে কিছু নাকের শিরা যুক্ত তাই রক্ত জমাট বাঁধার সমস্যা হতে পারে বার বার নাকে খোঁচানো এড়িয়ে চলা একজন অভিজ্ঞ ব্যক্তির সাহায্যে শরীরের লোম তোলা ব্যথা কমানোর জন্য গরম সেঁক নেওয়া প্রাথমিকভাবে নাকের ভিতর নারকেল তেল দেওয়া যাতে স্বস্তি বা আরাম পাওয়া যায় প্রভৃতি হল নিজস্ব কিছু যত্ন নেওয়ার উপায়সমূহ পেইরোনিস ডিজ়িজ (বাঁকা পুরুষাঙ্গ) পেনিস বা লিঙ্গের সংযোজক কলার রোগ যেখানে লিঙ্গের মধ্যে একটি ননইলাস্টিক আঁশাল টিস্যু গঠিত হয় যার ফলে লিঙ্গ বক্রতার হয় এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি যৌন মিলনের সময় যন্ত্রণাদায়ক ইরেকশন হয় যা যৌনমিলনের সময় অসন্তোষজনক হতে পারে এই অবস্থা মানসিক অবসাদের সৃষ্টি করতে পারে তাই চিকিত্‍সার জন্য ইউরোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যক পেইরোনিস ডিজ়িজ (বাঁকা পুরুষাঙ্গ) লিঙ্গ বক্রতা হিসেবে পরিচিত যেক্ষেত্রে নিচে আলোচিত লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি দেখা যায়লিঙ্গর টিস্যু শক্ত হয়ে যায় বা পিন্ড দেখতে পাওয়া যায়লিঙ্গের উপরের বা নিচের দিকে বক্রতালিঙ্গের চেহারা বালি ঘড়ির মত হয়ে যায়লিঙ্গ ছোট হয়ে যাওয়াব্যথা পেইরোনিস ডিজ়িজের (বাঁকা পুরুষাঙ্গ) প্রধান কারণ হলোলিঙ্গে বারংবার আঘাত লাগা খেলাধুলার সময় লিঙ্গে আঘাত দুর্ঘটনা অথবা বারংবার যৌন মিলন আহত জায়গায় প্রদাহ সৃষ্টি করতে পারে যা প্লেক তৈরি করে স্ট্রেসের জন্য এই অবস্থার আরও অবনতি হয়দ্বিতীয় কারণটি হল রোগের জেনেটিক ট্রান্সমিশন সাধারণত লিঙ্গের শারীরিকভাবে পরীক্ষার দ্বারা একজন ইউরোলওজিস্ট এই রোগের নির্ণয় করেন বিভিন্ন ধরণের তথ্য নোট করে যেমন পেনাইল ট্রমার সময় লিঙ্গের স্থায়িত্বের অগ্রগতি আর কিভাবে তা আপনার যৌনজীবনকে ব্যহত করছে তা নির্ণয়ের জন্য সাহায্যকারী হতে পারেফ্লাসিড অবস্থায় পরীক্ষা করলে লিঙ্গের কোন অংশে বৃদ্ধি হয়েছে তা জানতে সুবিধা হয়ইরেক্টেড অবস্থায় লিঙ্গ বক্রতার পরিমাপ করা হয়আকার অবস্থান এবং টিস্যুতে ক্যালশিয়াম তৈরি এবং জমা হওয়া সম্পর্কে জানতে ডুপ্লেক্স ডপলার পরীক্ষা করা হয়আল্ট্রাসোনোগ্রাফিডায়াবেটিস বা হরমোনের ওঠানামার সমস্যায় ভুগছেন এমন কারোর ক্ষেত্রে রক্ত পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয়যদি লিঙ্গ বক্রতা যৌন জীবনে কোনও অসুবিধার সৃষ্টি না করে তাহলে আপনার চিকিৎসক হয়ত কোনও চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন না চিকিৎসা পদ্ধতি হলওষুধযে সমস্ত ওষুধ ফাইব্রয়েডের আকার কমাতে সাহায্য করে সেগুলি স্থানীয় মুখ দিয়ে বা ফুটো করে বা আয়নটোফোরেটিক (বৈদ্যুতিক কারেন্ট ব্যবহার করে) ত্বকের মাধমে দেওয়া হয়ওষুধ যা অক্সিডেটিভ স্ট্রেস কমায়ননসার্জিকাল থেরাপিপেনাইল ট্র্যাকশনভ্যাকুয়াম ইরেক্টাইল ডিভাইসরেডিয়েশন থেরাপিহাইপার থারমিয়া থেরাপিঅতিরিক্ত কর্পোরিয়েল শক ওয়েভ থেরাপিসার্জারি বা অস্ত্রোপচারবিভিন্ন উপায়ে পেরোনিস ডিসিজ নিরাময় করা হয় এই অবস্থার জন্য মানসিক অবসাদের চিকিৎসার জন্য সেক্স কাউন্সেলর এবং সাইকোলজিক্যাল কাউন্সেলরের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয় তাৎক্ষণিক চিকিৎসার জন্য আপনার চিকিৎসকের কাছ থেকে সঠিক চিকিৎসা পরামর্শ চাওয়া ভালো পেনিস বা লিঙ্গ হলো পুরুষের কপিউলেটরি অর্থাৎ মৈথুনাঙ্গ যা পুরুষের প্রজনন পদ্ধতির একটি অংশ লিঙ্গের রোগ শুধুমাত্র অস্বস্তি বা ব্যথার কারণ নয় সেই সঙ্গে আক্রান্ত ব্যক্তির যৌন ক্রিয়াকেও প্রভাবিত করে এবং তা থেকে প্রজনন সংক্রান্ত চিন্তার উদ্রেক হতে পারে লিঙ্গের সাধারণ সমস্যার মধ্যে রয়েছে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন ব্যালানাইটিস প্রিয়াপিজম পাইরোনিস ডিজিজ এবং অত্যন্ত বিরল রোগ পেনাইল ক্যান্সার উপসর্গগুলি অন্তর্নিহিত অবস্থার অনুরূপ হয় নিম্নলিখিত কারণগুলির দ্বারা বর্ণনা দেওয়া যেতে পারে এবং সেইভাবে বর্ণনা করা যেতে পারেইরেক্টাইল ডিসফাংন এটি সবচেয়ে সাধারণ অবস্থা যেখানে ইরেকশন বা ঋজুতা বজায় রাখতে অসুবিধা অথবা অক্ষমতা হয়প্রিয়াপিজম একটি যন্ত্রণাদায়ক অবস্থা এই অবস্থায় লিঙ্গ 4 ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে ঋজু হয়ে থাকেফিমোসিস এই অবস্থায় লিঙ্গের উপরের চামড়া খুব শক্ত হয়ে যায় এবং আপনা থেকে পিছন দিকে সরতে পারে না তার ফলে প্রচণ্ড ব্যথা হয়পাইরোনিস ডিজিজ এই রোগে লিঙ্গের ভিতরের আস্তরণে স্কার বা অস্থিস্থাপক টিস্যুর শক্ত পিণ্ড তৈরি হওয়ার ফলে লিঙ্গ যখন ঋজু হয় তখন তা একদিকে বেঁকে যায় চামড়ার উপরের এই রোগে লিঙ্গে ফুসকুড়ি চুলকানি ত্বক বিবর্ণতা এবং আলসার বা ঘা হয়ে যায় প্রিয়াপিজমের কারণগুলির মধ্যে রয়েছে নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ গ্রহণ মদ আঘাত মেরুদণ্ডের অবস্থাপ্রিম্যাচিওর ইজাকুলেশন বা শীঘ্রপতন প্রধানত উদ্বিগ্নতা মানসিক চাপ এবং যৌনতা দমনের ইতিহাসের কারণে হয়ফিমোসিস সাধারণত সেইসব পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় যাঁরা খৎনা অথবা লিঙ্গের অগ্রভাগের চামড়া ছাড়াননিপাইরোনিস রোগের সঠিক কারণ অজানা কিন্তু ভাস্কুলাইটিস আঘাত এবং বংশগত কারণগুলি কিছু সংযুক্ত কারণধূমপান এবং এইচপিভি (হিউমান প্যাপিলোমা ভাইরাস ) পেনিস ক্যান্সারের গুরুত্বপূর্ণ কারণ রোগ নির্ণয় সাধারণত লিঙ্গ এবং অন্ডকোষের পরীক্ষার মাধ্যমে করা হয় সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির প্রজনন ক্ষমতা সংরক্ষিত আছে কি না তা সুনিশ্চিত করার জন্য রুটিন স্পার্ম কাউন্ট এবং লোকাল সোনোগ্রাফি করা হয় চিকিৎসা কারণের ওপর নির্ভর করে হয়প্রিয়াপিজমের চিকিৎসায় একটি সূঁচের মাধ্যমে লিঙ্গ থেকে বের করে নেওয়া হয়ফিমোসিসের চিকিৎসার জন্য প্রায়শই অস্ত্রোপচারের প্রয়োজন হয়পাইরোনিস ডিজিজ যদি মৃদু হয় 15 মাসের মধ্যে বিনা চিকিৎসাতেই আপনা থেকেই সেরে যায়পেনিস ক্যান্সারের চিকিৎসায় অস্ত্রোপচার রেডিয়েশন এবং কেমোথেরাপির সাহায্য নেওয়া হয়পেনিস ডিসঅর্ডার অথবা লিঙ্গের রোগের মোকাবিলা করা যন্ত্রণাদায়ক এবং এটি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির আবেগ তাড়িত মানসিক অবস্থাকে প্রভাবিত করে পারেনির্দিষ্ট কিছু স্বযত্নের টিপস রয়েছে যা লিঙ্গের রোগ প্রতিরোধে সাহায্য করে এবং এইভাবে ব্যক্তিকে সুস্থ যৌন জীবন দেয় অন্তর্ভুক্ত টিপস হললিঙ্গকে পরিষ্কার রাখানিয়মিত যৌনাঙ্গের পরীক্ষা করানোএকাধিক যৌনসঙ্গী না রাখাআঁটোসাঁটো অন্তর্বাস না পরাপ্রচণ্ড উত্তাপের সংস্পর্শ থেকে লিঙ্গকে রক্ষা করাধূমপান ত্যাগযদি লিঙ্গে কোনওরকম অস্বাভাবিক পরিবর্তন দেখা দেয় তাহলে সময়মতো রোগ নির্ণয় এবং চিকিৎসার জন্য সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির সঙ্গে সঙ্গে ডাক্তার দেখানো উচিত দীর্ঘকালীন সংক্রমণের ফলে মহিলাদের যৌনাঙ্গের প্রদাহের সৃষ্টিকে পেলভিক ইনফ্লামেটোরি ডিজিজ (পিআইডি) বলে এই সংক্রমণের ফলে যৌনাঙ্গের বিভিন্ন অংশ যেমন নালী ডিম্বাশয় ও জরায়ু ক্ষতিগ্রস্থ হতে পারে দ্রুত চিকিৎসা না হলে এর থেকে গুরুতর সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে যেমন গর্ভধারণের সমস্যা বা গর্ভাবস্থার জটিলতা পেটের নিচের দিকে দীর্ঘক্ষণ ভোঁতা যন্ত্রণা পিআইডির সবথেকে পরিচিত উপসর্গগুলির মধ্যে একটি অস্বাভাবিক সাদাস্রাব যার রং হতে পারে বিশ্রী বা সবুজ উপসর্গটিও এই রোগে প্রায়শই দেখতে পাওয়া যায় এছাড়া অনিয়মিত ঋতুস্রাব দুটি মাসিক চক্রের মধ্যে স্পটিং ও যন্ত্রণাদায়ক মাসিক ইত্যাদি উপসর্গও মহিলাদের মধ্যে দেখা যেতে পারে অপরিচিত উপসর্গগুলির মধ্যে আছে বমিভাব বা বমি এবং যৌন সম্পর্কের সময় যন্ত্রনা অনুভব ভারতবর্ষের মহিলাদের মধ্যে পিআইডি বন্ধ্যাত্বের একটি অন্যতম কারণ জরায়ুর বাহ্যিক প্রবেশপথ হল সার্ভিক্স যা যেকোন রকম ব্যাকটেরিয়ার আক্রমণ থেকে জরায়ু ও ডিম্বাশয়কে রক্ষা করে কিন্তু অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে সার্ভিক্সের ক্লেমাইডিয়া ও গনোরিয়া জাতীয় সংক্রমণের সংস্পর্শে আসার সম্ভাবনা থাকে এর থেকে অভ্যন্তরীন অঙ্গগুলিতে ব্যাকটেরিয়া পৌঁছে যায় এবং প্রদাহের সৃষ্টি করে এই রোগের আরেকটি তুলনামূলক অপরিচিত কারণ হল কিছু নির্দিষ্ট চিকিৎসা প্রণালী যেমন এন্ডোমেট্রিয়াল বায়োপ্সি জন্মনিরোধক যন্ত্রের প্রবেশ বা গর্ভপাত পিআইডি নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসক মূলত ঋতুস্রাব যৌন সম্পর্ক ওষুধ পূর্ববর্তী চিকিৎসা প্রভৃতির পুঙ্খানুপুঙ্খ ইতিহাস সংগ্রহ করেন এরপর আঞ্চলিক রক্তপাত বা ডিসচার্জের সন্ধানে একটি সম্পূর্ণ পেলভিক পরীক্ষা করা হয় যোনিস্রাবের একটি নমুনা সংগৃহীত হয় মাইক্রোস্কোপের নিচে পরীক্ষার জন্য যা থেকে সংক্রমণের উপস্থিতি জানা যায় এছাড়া অঙ্গগুলির সামগ্রিক অবস্থা দেখার জন্য লোকাল স্ক্যান করা হতে পারে ফলাফল জানা অবধি যৌন সম্পর্ক সম্পূর্ণভাবে এড়িয়ে চলা উচিতমৃদু সংক্রমণের ক্ষেত্রে চিকিৎসক এন্টিবায়োটিকের কোর্সের পরামর্শ দেবেন সাধারণত 14 দিনের জন্য কোর্সটি সম্পূর্ণ করা এবং চিকিৎসা চলাকালীন যৌন সম্পর্ক বন্ধ রাখা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাথার জন্য পেনকিলার দেওয়া হয় পরে চিকিৎসকের সঙ্গে ফলোআপ করে নেওয়া উচিত গুরুতর সংক্রমণের ক্ষেত্রে আরো তদন্তের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করার প্রয়োজন হতে পারেএর চিকিৎসা করা হয় ইনজেক্টবল এন্টিবায়োটিকের সাহায্যে একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌন সম্পর্কের বিরুদ্ধে পরামর্শ দেওয়া হয় এবং কন্ডোম ব্যবহার করতে বলা হয় পেলাগ্রা একপ্রকার পুষ্টিজনিত অসুখ যা নিয়াসিনের (ভিটামিন বি কমপ্লেক্স শ্রেণীর একটি ভিটামিন) অভাবে ঘটে অপর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণ বা পাকতন্ত্রে ত্রুটিপূর্ণ শোষণের ফলে নিয়াসিনের অভাব ঘটতে পারে এটি একটি সামগ্রিক অসুস্থতা যা ত্বক পাকনালি ও স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে রোগটির প্রভাব মূলত এদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় কারণ এই টিস্যুগুলিতে গুরুতর কোষ বিপর্যয় ঘটে পেলাগ্রার সবথেকে পরিচিত উপসর্গগুলিকে প্রায়শই 3ডি নামে ডাকা হয় এগুলি হল ডায়রিয়া ডিমেনশিয়া এবং ডার্মাটাইটিস ডার্মাটাইটিস অনেকটা রোদে পোড়ার মত দেখতে হয় এবং সূর্যের সংস্পর্শে এটি বৃদ্ধি পায় এতে আক্রান্ত ত্বকে লালভাব এবং চুলকানি থাকে এর প্রভাব দেহের দুইপাশে সুষমভাবে দেখতে পাওয়া যায় পাকতন্ত্র সম্পর্কিত উপসর্গগুলি হল পেটে অস্বস্তি বমিভাব ডায়রিয়া যাতে জলের মতো বিরল ক্ষেত্রে রক্তসহ পায়খানা হয় স্নায়ুতন্ত্রের উপসর্গগুলি হল বিভ্রান্তি স্মৃতি লোপ ডিপ্রেশন বা অবসাদ এবং কিছু ক্ষেত্রে হ্যালুসিনেশন রোগটি যত অগ্রসর হয় রোগী ক্রমশ বিচলিত ও বিকারগ্রস্ত হয়ে ওঠে চিকিৎসা না করলে এর ফলে মৃত্যুও ঘটতে পারে পেলাগ্রা প্রধানত খাদ্যে নিয়াসিনের অভাবের কারণে ঘটে এটি সাধারণত হায়দ্রাবাদে বসবাসকারী দরিদ্র মানুষদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায় যাদের মূল খাদ্য জোয়ার জোয়ার একটি ভুট্টাজাতীয় খাদ্য যা শরীরে নিয়াসিনের শোষণে বাধা দেয় এই রোগটির গৌণ কারণের মধ্যে আছে পাচনতন্ত্রের কিছু সমস্যা যাতে যথেষ্ট পরিমাণ নিয়াসিন গ্রহণ করলেও তার শোষণ হয়না এছাড়াও মদ্যপান কিছু ওষুধের ব্যবহার এবং লিভার ক্যান্সারও এই সমস্যার কারণ হতে পারে পেলাগ্রা নির্ণয়ের জন্য কোন নির্দিষ্ট ল্যাবরেটরি পরীক্ষা নেই সুতরাং এর নির্ণয় নির্ভর করে রোগীর ইতিহাস ভৌগোলিক অবস্থান ও প্রেক্ষাপটের উপর কোন কোন ক্ষেত্রে মূত্র পরীক্ষায় ক্ষয়প্রাপ্ত নিয়াসিনের বর্জ্য পদার্থ পাওয়া যায় যা এই রোগের নির্ণয়ে সাহায্য করতে পারেপেলাগ্রার চিকিৎসার জন্য এর কারণগুলির চিকিৎসা করা প্রয়োজন অপর্যাপ্ত খাদ্যগ্রহণের ফলে হওয়া পেলাগ্রা নিয়াসিন সরবরাহের মাধ্যমে সহজেই নিরাময় সম্ভব চিকিৎসা শুরুর কয়েক দিন থেকে কয়েক সপ্তাহের মধ্যে রোগীর অবস্থার উন্নতি দেখা যায় কিন্তু ত্বকের সমস্যার উপশমে একাধিক মাস লেগে যায় নিজের যত্ন নেওয়ার জন্য রোগীর কিছু নির্দিষ্ট পদ্ধতি অনুসরণ করা প্রয়োজন যেমন ত্বককে নিয়মিত আর্দ্র রাখা এবং বাইরে বেরোলে সবসময় সানস্ক্রিনের ব্যবহার করা অন্যান্য কারণে সৃষ্ট পেলাগ্রার সেই অনুযায়ী চিকিৎসা হয় তবে ইনট্রাভেনাস নিয়াসিন প্রয়োগ এদের ক্ষেত্রেও উপকারী এই রোগের ফলে মৃত্যু ঘটতে পারে যদি 45 বছর একে অবহেলা করা হয় পার্কিনসন রোগ হল একটি স্নায়বিক অসুস্থতা যেটি নিউরোনের (স্নায়ুর কোষ) উপর প্রভাব বিস্তারের মাধ্যমে মস্তিষ্কে বর্ধনশীল ক্ষয়ের সৃষ্টি করে এই নিউরোনগুলি ডোপামিন নামক নিউরোট্রান্সমিটারের সাহায্যে মস্তিস্ক জুড়ে বার্তা পাঠানোর জন্য দায়ী স্বাভাবিক অবস্থায় ডোপামিনের সাহায্যে মসৃণ ও ভারসাম্যপূর্ণ পেশী নিয়ন্ত্রণ সম্ভব হয় এই নিউরোট্রান্সমিটারটির অভাবের ফলেই পার্কিনসন রোগের উপসর্গগুলি দেখা দেয় পার্কিনসন রোগের সবথেকে প্রথম ও সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে একটি হল দেহের কোন একটি অংশে কম্পনের অনুভূতি এটি হতে পারে হাতে বা পায়ে এমনকি চোয়ালেও হাতের বিশ্রামের সময় সাধারণত এই কম্পন দেখতে পাওয়া যায় মূলত তর্জনীর উপর বুড়ো আঙুলের নড়াচড়া হিসাবেদ্বিতীয় যে উপসর্গটি সাধারণত দেখতে পাওয়া যায় সেটি হল পেশীর কাঠিন্য অনিয়ন্ত্রিত পেশী কাঠিন্যের ফলে অবাধ অঙ্গপরিচালনে ব্যাঘাত সৃষ্টি হয় এই রোগীদের মধ্যে যেকোন ক্রিয়াকলাপের গতি ক্রমশ কমতে থাকে স্নান বা খাওয়ার মত সহজ কাজ সম্পূর্ণ করতেও অস্বাভাবিক রকম বেশি সময় লাগতে পারেএই রোগের অগ্রসর পর্যায়ের উপসর্গগুলির মধ্যে আছে ভারসাম্যের অভাব ডিপ্রেসন বা অবসাদ মুখোশসদৃশ অভিব্যক্তি এবং নুয়ে পড়া দেহভঙ্গিমাতুলনামূলক অপরিচিত উপসর্গগুলি হল ভয় লালাক্ষরণ ত্বকের সমস্যা মূত্রসংক্রান্ত সমস্যা এবং যৌনক্রিয়ায় অক্ষমতা কম্পনের কারণে রোগীর হাতের লেখা এবং কথা বলাও যথেষ্ট ক্ষতিগ্রস্থ হয় যদিও এই রোগের সম্ভাব্য কারণের খোঁজে গবেষণা চলছে এখনো অবধি তা খুঁজে পাওয়া যায়নি জিনগত কারণ এবং কিছু পরিবেশগত উপাদান পার্কিনসনের সম্ভাবনা বৃদ্ধির জন্য দায়ী বলে মনে করা হয়জিনের পরিবর্তনকেও পার্কিনসন রোগের সম্ভাব্য কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে কিন্তু এর নিশ্চিত প্রভাব এখনো পরিষ্কার নয়কৃষিক্ষেত্রে ব্যবহৃত কীটনাশকের সংস্পর্শ এই রোগটির একটি সম্ভাব্য পরিবেশগত উপাদান অন্যান্য বিরল কারণগুলি হলো কয়েকটি এন্টিসাইকোটিক ওষুধ বা মস্তিষ্কের অসুস্থতা বা অতীতে একাধিক স্ট্রোকের আক্রমণ পার্কিনসন রোগের নির্ণয় করা সহজ নয় কারণ এর নিশ্চিতকরণের জন্য কোন নির্দিষ্ট রক্ত পরীক্ষা বা ল্যাবরেটরি পরীক্ষা নেই তাছাড়া এর উপসর্গগুলো প্রায়শই অন্যান্য সমস্যা যেমন অস্থিজনিত অস্বাভাবিকত্ব বা ভিটামিনের অভাব প্রভৃতির উপসর্গের সাথে সাদৃশ্য বহন করেসুতরাং রোগীর বিস্তৃত ইতিহাস এবং পূর্ববর্তী ওষুধের ব্যবহার সঠিকভাবে সংগ্রহ করা প্রয়োজন মস্তিষ্কের উপর এর সামগ্রিক প্রভাব দেখার জন্য সিটি স্ক্যান বা এমআরআই করা হতে পারে একজন অভিজ্ঞ স্নায়ুবিশেষজ্ঞের সাথে আলোচনা করা উচিত যিনি সাময়িক ব্যবধানে উপসর্গগুলির পরীক্ষা করতে থাকবেন এবং রোগের বিস্তারের উপর নজর রাখবেনরোগটির চিকিৎসায় ডোপামিনের অভাবপুরণের জন্য বিভিন্ন প্রকার ওষুধ পাওয়া যায় এই ওষুধগুলো মস্তিষ্কের ক্ষতিগ্রস্থ অঞ্চলকে উদ্দীপ্ত করে কিন্তু দীর্ঘকালীন ব্যবহারের ফলে ওষুধগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দিতে পারেযদি ওষুধগুলি উপসর্গের নিয়ন্ত্রণ করতে না পারে তবে অস্ত্রপচারের চিন্তা করা হয় এই পদ্ধতিতে ইলেকট্রোড বসিয়ে মস্তিষ্ককে উদ্দীপ্ত করা হয় এবং কম্পন সৃষ্টির জন্য দায়ী উদ্দীপনাগুলিকে বাধা দেওয়া হয়পার্কিনসন রোগ একটি বর্ধনশীল অসুস্থতা এই সমস্যার কোন নির্দিষ্ট নিরাময় নেই কিন্তু এই অসুখে আক্রান্তদের দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্য হওয়া উচিত মানসিক সুস্থতা ও শারীরিক কার্যকলাপ বজায় রাখা প্যানিক অ্যাটাক এবং ডিসঅর্ডার হলো এক প্রকারের মানসিক উদ্বেগের রোগ যার সঙ্গে একজন ব্যাক্তি কোনো বিশেষ বস্তু লোক বা অবস্থায় প্রতিক্রিয়া হিসাবে প্রচন্ড ভয় পান যখন আপনি প্যানিক অ্যাটাক অনুভব করবেন তখন ব্যাক্তি এটা মনে করতে পারেন যে তারা নিজেদেরই প্রতিক্রিয়া বা আবেগের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছেন একটা গভীরতর দুশ্চিন্তাময় পর্ব প্যানিক অ্যাটাক হিসাবে পরিচিত কিন্তু যখন কোনো ব্যক্তি দীর্ঘসময়ের জন্য প্যানিক অ্যাটাক অনুভব করেন তখন চিকিৎসার ভাষায় একে প্যানিক রোগ বলে প্যানিক অ্যাটাকের সময় ব্যাক্তি মনোতাত্ত্বিক উপসর্গগুলো অনুভব করে যেমনপ্রচন্ড নার্ভাস হওয়াপ্রচন্ড ভয় পাওয়ামানসিক চাপ ও দুশ্চিন্তাএকা থাকতে চাওয়া এবং লোকের সঙ্গ এড়ানোপ্যানিক অ্যাটাকে সাধারণত নিম্নলিখিত শরীরিক উপসর্গগুলো দেখা যায়দ্রুত হৃদস্পন্দন (আরো পড়ুন ট্যচিকার্ডিয়া কারণ ও চিকিৎসা)বুকে ব্যথাশ্বাসকষ্টঅতিরিক্ত ঘাম হওয়াঝিমুনিভাবদূর্বলতাপেটে ব্যথা অতিরিক্ত মানসিক চাপের কারণে প্যানিক রোগ হয় যাইহোক এটা একটা মনোগত ব্যাধি যার সঠিক চিকিৎসার দরকার কোনো একটা বিশেষ বস্তুর উপর প্রতিক্রিয়া বিভিন্ন জনের বিভিন্ন রকম হতে পারে সাধারণত প্যানিক রোগ বাড়তে থাকে যদি কোনো ব্যাক্তি দীর্ঘসময় যাবৎ প্রচন্ড মানসিক চাপ বা দুশ্চিন্তার মধ্যে কাটায়অনেক লোকের ক্ষেত্রে কোনও নির্দিষ্ট কারণ বা উত্তেজনা রয়েছে যার ফলে প্যানিক অ্যাটাক হয় উদাহরনস্বরূপ কোনো কোনো ব্যাক্তির প্যানিক অ্যাটাকের কারণ ভীড়ভাড় পরিবেশ প্যানিক অ্যাটাকের কারণগুলো নির্ভর করে ভালবাসার কাউকে হারাবার ভয় নিজেকে বা নিজের প্রিয়জনকে ক্ষতি পৌঁছানোর হুমকি ভয়াবহ আর্থিক ক্ষতি ইত্যাদির উপরযাইহোক প্যানিক অ্যাটাক কোনো সতর্কীকরণ ছাড়াও দেখা দিতে পারে এই রোগটি একজন মনরোগবিশেষজ্ঞর দ্বারাই নির্ণীত হয় বেশীরভাগ সময় একজন মনোস্তাত্ত্বিক দ্বারা প্যানিক রোগ ঠিক করার জন্য ব্যাক্তিকে তার নিজস্ব উপসর্গের উপর নিয়ন্ত্রণ করতে বলা হয় আরামদায়ক ও শ্বাসের ব্যায়াম করে মানসিক চাপ দূর করতে কাউন্সিলিং করা হয় ও কগনিটিভ আচরণগত থেরাপীর দ্বারা চিকিৎসা করা হয়গুরুতর অবস্থায় ওষুধের দরকার পড়ে এইসব ক্ষেত্রে সাধারণত উদ্বেগ কমানোর ওষুধ দেওয়া হয়এটা জানা দরকার যে প্যানিক রোগটি প্রাণঘাতি ব্যাধি না কিন্তু একজনের আত্মবিশ্বাসের উপর প্রভাব ফেলতে পারে উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সময়মত সহায়তা ও উপসর্গের সচেতনতার সাহায্যে প্যানিক রোগ নিয়ন্ত্রণ করা যায় অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগ বলতে সেই অবস্থাকে বোঝায় যেখানে কোনও ব্যক্তি মূত্র ত্যাগ করার হঠাৎ এবং অনিবার্য তাড়না অনুভব করেন এই তাড়না দিনে যেকোনও সময় অনুভূত হতে পারে এই রোগটি খুবই সাধারণ এবং কোনও ব্যক্তির দৈনিক জীবনে অসুবিধা এবং সামাজিক পরিস্থিতিতে অস্বস্তির সৃষ্টি করতে পারে অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগে নিন্মলিখিত উপসর্গগুলি লক্ষ্য করা যেতে পারেমূত্রত্যাগের করার তীব্র তাড়না এই তাড়না অনিবার্য হতে পারে এবং চেপে রাখা খুবই কঠিন এর ফলে অনিচ্ছাকৃতভাবে কিছুটা প্রস্রাব বেরিয়ে যায় যা আর্জেন্সি ইউরিনারি ইনকন্টিনেন্স নামে পরিচিতবারবার প্রস্রাব করা অতিসক্রিয় মূত্রাশয়ের কারণে কোনও ব্যক্তির স্বাভাবিকের চেয়ে বেশিবার প্রস্রাব হতে পারে (আরও পড়ুন বারবার মূত্রত্যাগ করার কারণ এবং প্রতিকার)ঘুমে ব্যাঘাত হঠাৎ করে মূত্রত্যাগ করার তাড়নার ফলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে রাত্রিবেলা বারবার ঘুম থেকে উঠতে হতে পারে এতে ঘুমে ব্যাঘাত ঘটতে পারেযদি সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মানসিক চাপ ও উদ্বিগ্নতা উপলব্ধি করেন তাহলে অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগ আরও খারাপ আকার নিতে পারে অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগের অন্তর্র্নিহিত কারণ মূত্রাশয়ের পেশীগুলির অতিরিক্ত সংকোচন যা বারবার প্রস্রাব করার তাড়না উৎপন্ন করে তবে ঠিক কি কারণে পেশীগুলির সংকোচনে অস্বাভাবিকতা আসে তা এখনও পরিষ্কার নয়দেখা গিয়েছে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের মূত্রাশয় মস্তিস্কে বার্তা পাঠাতে পারে যে মূত্রাশয় বরে উঠেছে কিন্তু আদৌ তা ভর্তি হয়নিকিছু কিছু ক্ষেত্রে অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগ মস্তিষ্কের কোনও রোগের কারণে হতে পারে যেমনপারকিনসন রোগমাল্টিপল স্ক্লেরোসিসসুষুম্নাকাণ্ডে আঘাত অতিসক্রিয় মূত্রাশয় রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসক সাধারণত উপসর্গ সম্পর্কে জানতে চান এবং তারপর সংক্রমণের কোনও লক্ষণ আছে কিনা তা জানতে শারীরিক পরীক্ষা করেন অথবা মূত্র পরীক্ষা করান মূত্র প্রবাহের গতি এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি মূত্রাশয় সম্পূর্ণরূপে খালি করছে কিনা তা মূল্যায়ন করার জন্য ফ্লো টেস্ট করা হতে পারেএই রোগের চিকিৎসার জন্য ব্লাডার ট্রেনিং করানো হয় এর ফলে কোনও ব্যক্তি মূত্রাশয়ের গতিবিধির উপর কিছু মাত্রায় নিয়ন্ত্রণ আনতে পারেন এবং মূত্রত্যাগের তাড়নাকে খানিকটা বিলম্বিত করা যায় ওষুধ দেওয়া হতে পারে কিন্তু পেলভিক ব্যায়াম করা ক্যাফেন ও অ্যালকোহল বর্জন আর অতিরিক্ত ওজন কমানোর মতো জীবনযাত্রায় কিছু পরিবর্তন এই রোগের পরিচালনায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেকিছু ক্ষেত্রে সার্জারি সুপারিশ করা যেতে পারে অবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার (ওসিডি) হল একপ্রকার অসুস্থতা যা মানুষের মানসিক স্বাস্থ্যকে প্রভাবিত করে এটি শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্ক উভয়ের মধ্যেই দেখা যেতে পারে এই সমস্যায় আক্রান্ত মানুষ যুক্তিহীন অবসেশন (অনর্থক চিন্তার পুনরাবৃত্তি) এবং কম্পালসনের (সেই চিন্তা অনুযায়ী কাজ করার অদম্য ইচ্ছা) এক চক্রের মধ্যে আটকে পড়েন এছাড়াও এর ফলে মানসিক চিত্র বাসনা ও অবাঞ্ছিত চিন্তার সৃষ্টি হয় যা মানুষটির মানসিক যন্ত্রণার কারণ হতে পারে ওসিডির মূল উপসর্গগুলি হলমানসিক প্রতিচ্ছবি বাসনা ও চিন্তার পুনরাবৃত্তি যা উদ্বেগের সৃষ্টি করেধর্ম ও যৌনতা সম্পর্কে অত্যধিক নিষিদ্ধ চিন্তাবারবার একই কাজ করা যেমন গ্যাস বন্ধ আছে কিনা অথবা দরজায় তালা দেওয়া হয়েছে কিনা দিনে একশবার সেই খোঁজ নেওয়াজিনিসপত্রকে নিখুঁত বিন্যাসে রাখা সুষম সজ্জায় অথবা অত্যন্ত নির্দিষ্ট রীতিতে রাখাবারংবার গোনাটিক ডিসঅর্ডার আকস্মিক পৌনঃপুনিক পেশী সঞ্চালন যেমন কাঁধ ঝাকানো চোখের পাতা ফেলা মুখবিকৃতি কিছু ভোকাল টিক দেখা যায় যেমন গলায় শব্দ করা গলা খাকরানো এবং বারবার নাক টানানিজের অথবা অন্যদের প্রতি আক্রমনাত্বক চিন্তাভাবনাজীবাণু ও দূষণের ভয়ে অতিরিক্ত হাত ধোয়া বা পরিষ্কার করা ওসিডির মূল কারণগুলি হলমস্তিষ্কের অস্বাভাবিকত্বমস্তিষ্কের বিভিন্ন অংশগুলির মধ্যে পারস্পরিক যোগাযোগের সমস্যাজিনগত সমস্যাঅস্বাভাবিকরকম নিম্ন মাত্রায় সেরোটোনিনএর উপস্থিতি শারীরিক ও মানসিক পরীক্ষার মাধ্যমে ওসিডি নির্ণয় করা হয় চিকিৎসক জিজ্ঞাসা করেন অবসেশন ও কম্পালসনের উপরোক্ত কতগুলি উপসর্গ রোগীর দৈনন্দিন জীবনে ব্যাঘাত করছে দিনে অন্তত একঘন্টা সময় নষ্ট করছে অথবা মানসিক যন্ত্রণা সৃষ্টি করছেওসিডির চিকিৎসায় নিম্নোক্ত পদ্ধতিগুলো ব্যবহার করা হয়ে থাকেওষুধ মস্তিষ্কে রাসায়নিক ভারসাম্য ফেরাতে এন্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ দেওয়া হয় ওসিডির উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণের জন্য সিলেক্টিভ সেরোটোনিন রিআপটেক ইনহিবিটর (এসএসআরআই) দেওয়া হয় যা মস্তিষ্কে সেরোটোনিন মাত্রা বৃদ্ধি করেসাইকোলজিকাল থেরাপি এই থেরাপি অবসেসিভ চিন্তা ও ভীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে সাহায্য করেডীপ ব্রেন স্টিমুলেশন (ডিবিএস) অন্তত পাঁচ বছরব্যাপী ওসিডিতে ভুগছেন এমন রোগীদের ক্ষেত্রে এই চিকিৎসাপদ্ধতিটি প্রয়োগ করা হয় এই প্রক্রিয়ায় ইলেকট্রোডের সাহায্যে হালকা বৈদ্যুতিক প্রবাহ পাঠিয়ে মস্তিস্ককে উদ্দীপ্ত করা হয় নিউরোলেপটিক ম্যালিগন্যান্ট সিন্ড্রোম (এনএমএস) একটি সম্ভাব্য প্রাণঘাতী অবস্থা যা অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ ব্যবহারের ফলে হয় আলজাইমার পারকিনসনিজম বাইপোলার ডিসঅর্ডার অবসাদ ও উদ্বিগ্নতার মতো রোগের চিকিৎসায় অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ ব্যবহৃত হয় এটি একটি বিরল অবস্থা যা সাধারণত পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় যদি এর চিকিৎসা না করা হয় তাহলে এর কারণে মৃত্যুও ঘটতে পারে সুতরাং এনএমএসের প্রথম লক্ষণেই অবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করা প্রয়োজনভারতীয় জনসংখ্যার মধ্যে এনএমএসের ঘটনা অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ ব্যবহারের প্রতি 1000টি ঘটনায় 14041 টি ক্ষেত্রে পাওয়া যায় অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধ নেওয়া শুরু বা মাত্রা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি উপসর্গ উপলব্ধি করতে শুরু করেন 12 সপ্তাহের মধ্যেই সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি যেসব উপসর্গগুলি প্রত্যক্ষ করতে পারেন380 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেড তাপমাত্রা সহ জ্বর কিন্তু 400 ডিগ্রি সেন্টিগ্রেডের কমমাংসপেশীতে কাঠিন্যতাকাঁপুনিনড়াচড়াতে অসুবিধাকথাবার্তায় অসুবিধাবিভ্রান্তিহৃদগতি বৃদ্ধিশ্বাসপ্রশ্বাসের মাত্রা বৃদ্ধিমানসিক অশান্তিঅস্বাভাবিক রক্তচাপঘাম ঝরাঅনৈচ্ছিক মুত্রত্যাগ (অসংযম)ক্রিয়েটিনিন কাইনিনের মাত্রা বৃদ্ধিমূত্রে প্রোটিন অ্যান্টিসাইকোটিক্স দিয়ে ডোপামিন রিসেপ্টরের অবরোধের ফলে এনএমএস ঘটে ডোপামিন হলো স্নায়ুর বার্তা প্রেরণে সহায়ক উপাদান স্নায়ু রিসেপ্টরে ডোপামিনের অনুপস্থিতির থেকে এনএমএস হয় এই প্রক্রিয়ার সঠিক কারণ এখনও অজানাঅন্যান্য যে কারণগুলি এনএমএসের ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিতে পারে2 বা ততোধিক অ্যান্টিসাইকোটিক্সের ব্যবহারহঠাৎ করে অ্যান্টিসাইকোটিক্সের মাত্রা বৃদ্ধিঅ্যান্টিসাইকোটিক্স ওষুধের মৌখিকভাবে গ্রহণ না করাডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতাচেতনানাশক ওষুধের ব্যবহারডোপামিন রিসেপ্টর উপর কাজ করে এমন ওষুধ নেওয়া বন্ধ করে দেওয়াবমনরোধক ওষুধএনএমএসের পূর্ব ইতিহাস এনএমএস নিশ্চিত করার কোনও নির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই তাই চিকিৎসক আপনাকে রক্ত পরীক্ষা ইলেক্ট্রোলাইট পরীক্ষা এবং মূত্রপরীক্ষা সহ অনেকগুলি পরীক্ষা করানোর পরামর্শ দেবেন আবার কখনও চিকিৎসক কোনও ইমেজিং টেস্ট অথবা ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাম (ইইজি) করানোর পরামর্শ দেনএনএমএসের জরুরি অবস্থা হওয়ায় অবিলম্বে ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন প্রথমতআপনার চিকিৎসক যে ওষুধগুলির কারণে এনএমএস হয়েছে সেগুলি বন্ধ করার পরামর্শ দেবেন তারপর এর উপসর্গের চিকিৎসা করা হয় হাইপারথারামিয়া (শরীরের উচ্চ তাপমাত্রা)র ক্ষেত্রে শরীর থেকে বের হয়ে যাওয়া তরল ও ইলেক্ট্রোলাইট বা খনিজের মাত্রা ফেরানোর পাশাপাশি শীতলীকরণ বৃদ্ধির জন্য ব্যবস্থা নেওয়া হয় চিকিৎসক আপনাকে এনএমএস হওয়ার কম ঝুঁকি রয়েছে এমন ওষুধ দেবেন কিুন্তু প্রতিনিয়ত খেয়াল রাখা দরকার সাধারণত 714 দিনের মধ্যে সেরে ওঠা লক্ষ্য করা যায় নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমার কার্সিনয়েড নামেও পরিচিত একাধিক কোষের এই টিউমার হরমোন নিঃসরণের পাশাপাশি স্নায়ুর বৈশিষ্ট্যসূচক এদের নিউরোএন্ডোক্রাইন কোষ বলা হয় এই টিউমারের বৃদ্ধি খুব ধীরে হয় শরীরের যে কোনও অঙ্গে এটি বিকশিত হতে পারে এটি ম্যালিগন্যান্ট (ক্যান্সারযুক্ত) অথবা বিনাইন (ক্যান্সারবিহীন) হতে পারে টিউমারের অবস্থানের ওপর নির্ভর করে উপসর্গ ভিন্ন হতে পারে অবস্থান নির্বিশেষে নিচে কিছু সাধারণ উপসর্গ উল্লেখ করা হল যা অবস্থান নির্বিশেষে হয়গরম বের হওয়া (মুখ ও ঘাড়ে ঘাম ছাড়াই)ডায়রিয়াশ্বাস নিতে অসুবিধাউচ্চ রক্তচাপক্লান্তি দুর্বলতাতলপেটে ব্যথা টান ধরা পেটভার অনুভবঅস্বাভাবিকভাবে ওজন বৃদ্ধি অথবা হ্রাসশ্বাসের সময় সাঁইসাঁই শব্দ কাশিপায়ের পাতা ও গোড়ালিতে ফোলাভাবচামড়ায় ক্ষত চামড়ায় ফ্যাকাশে ছোপরক্তে শর্করার মাত্রা বেশি অথবা কম নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমারের সঠিক কারণ এখনও জানা যায়নি নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমারের বিকাশের সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় যদি নিম্নোলিখিত বংশগত অবস্থাগুলি থাকেমাল্টিপল এন্ডোক্রাইন নিওপ্লাসিয়া টাইপ 1নিউরোফাইব্রোমাটোসিস টাইপ 1ভন হিপেললিনডাউ সিন্ড্রোম নিউরোএন্ডোক্রাইন রোগের নির্ণয় করা হয় নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে করা হয়রক্ত পরীক্ষাটিস্যুর বায়োপসিজিনগত পরীক্ষা এবং কাউন্সেলিংস্ক্যান যার মধ্যে রয়েছেআলট্রাসাউন্ডকম্পিউটারাইজড টোমোগ্রাফিম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিংপজিট্রন এমিসন টোমোগ্রাফিঅক্ট্রিওটাইড স্ক্যান এই ধরনের স্ক্য়ানে একটি মৃদু তেজস্ক্রিয় তরল শিরার মধ্যে ইনজেকশন দিয়ে প্রবেশ করানো হয় এবং ক্যামেরার সাহায্যে ক্যান্সারযুক্ত কোষগুলি সনাক্ত করা হয়লেপ্রস্কপিনিউক্লিয়ার মেডিসিন ইমেজিংঅবস্থান টিউমারের প্রবলতা এবং রোগীর সামগ্রিক স্বাস্থ্যের উপর নিউরোএন্ডোক্রাইন রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে এই রোগের জন্য যে চিকিৎসাগুলি উপলব্ধ তা হলঅস্ত্রোপ্রচার স্থানীয় কোনও অঙ্গে হওয়া বা লোকালাইজড টিউমার অস্ত্রোপ্রচার করে বাদ দেওয়া যেতে পারে এবং এটি চিকিৎসার প্রথম ধাপ হিসেবে বিবেচিতকেমোথেরাপি হরমোন থেরাপি/ও টার্গেটেড থেরাপি ব্যবহৃত হয় জটিল ও গুরুতর নিউরোএন্ডোক্রাইন টিউমারের চিকিৎসায়ওষুধ প্রয়োগ সোমাটোস্ট্যাটিন অ্যানালগ (অস্ট্রিওটাইড বা ল্যানরিওটাইড) অনেক হরমোনের বৃদ্ধি আটকে দেয় এবং উপসর্গগুলির তীব্রতা হ্রাস করে রোগের অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করে দেয়রেডিওথেরাপি এক্সরে অথবা গামা রশ্মির সাহায্যে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দিয়ে টিউমার হ্রাস করা করা অথবা তার বৃদ্ধি আটকে দেওয়া হয় স্নায়ু আপনার শরীরে সংকেত প্রেরণের কাজ করে স্নায়ু রোগ অথবা স্নায়ুতে আঘাত তার স্বাভাবিক কাজকর্মের ওপর প্রভাব ফেলে এবং তার ফলে স্নায়ুর দুর্বলতা দেখা দেয় স্নায়ুর দুর্বলতা আপনার শরীরের অংশগুলির কার্যকারিতার বিস্তৃত পরিসরের উপর প্রভাব ফেলে এবং এর ফলে সেগুলি বিকলাঙ্গ অবস্থায় পৌঁছাতে পারে স্নায়ুর দুর্বলতার প্রধান লক্ষণ ও উপসর্গগুলি নিম্নলিখিতব্যথাতীক্ষ্ণ কিছু ফোটা বা সুড়সুড়ির মতো অনুভূতিসংবেদনশীলতাসংবেদনের অনুভূতিক্লান্তিপেশীতে দুর্বলতাফুট ড্রপ (পায়ের সামনের অংশ উঁচু করতে অক্ষ্মতা) স্নায়ুর দুর্বলতার অসংখ্য অন্তর্নিহিত কারণ থাকতে পারে সেগুলি হলস্নায়ুতে আঘাতডায়াবেটিসএইচআইভি সংক্রমণমাল্টিপল স্ক্লেরোসিসক্যান্সার চিকিৎসাটিউমার ও ভাস্কুলেচার (রক্তবাহিকা)এর কারণে স্নায়ু সংকোচনপারকিনসন রোগস্ট্রোককুষ্ঠ এর লক্ষণ ও উপসর্গগুলি নির্দেশ করে যে এটি স্নায়ুতন্ত্রের সাথে জড়িত তবে স্নায়ুর দুর্বলতার উপসর্গ খুব সুস্পষ্ট নয় তাই চিকিৎসাগতভাবে রোগ নির্ণয় করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ আপনার চিকিৎসাজনিত পরিবারিক ও পেশাগত ইতিহাস গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিতে পারে ডাক্তারকে যা অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয়ে সাহায্য করতে পারে নিম্নলিখিত রোগ নির্ণয় পরীক্ষাগুলি করা হতে পারেইলেক্ট্রোডায়গনস্টিক টেস্টসসেনসরি অ্যান্ড মোটর নার্ভ কন্ডাকশনএফ রেসপন্সএইচ রিফলেক্সনিডল ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফিরক্ত পরীক্ষাঅটোইমিউন ডিসঅর্ডারএইচআইভিসিএসএফ পরীক্ষা (সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুয়িড)স্নায়ুর দুর্বলতা এক বা একাধিক অন্তর্নিহিত অবস্থার বা ব্যাধির ফলে হতে পারে তাই চিকিৎসা মূলত অন্তর্নিহিত কারণগুলির নিরাময়কে লক্ষ্যে রেখে করা হয় উপলব্ধ চিকিৎসা বিকল্পগুলি নিম্নলিখিতব্যথা নিয়ন্ত্রক ওষুধওপিঅয়েডসস্টেরয়েড বিহীন প্রদাহরোধী ওষুধ (এনএসএআইডিএস)ক্যাপসাইসিন প্যাচঅ্যান্টিডিপ্রেসান্ট বা অবসাদ নিরাময়কারী ওষুধস্নায়ু মেরামত ও উদ্দীপনার জন্য কাইনেটিক থেরাপিইলেক্ট্রোস্টিমুলেশনট্রান্সকুটানিয়াস ইলেক্ট্রোস্টিমুলেশন (টিসিইএস)ইলেক্ট্রোআকুপাংচারম্যাগনেটোথেরাপি এনজাইম্যাটিক স্টিমুলেশন রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধির মাধ্যমে পালসড ম্যাগনেটিক ফিল্ড স্নায়ু পুনর্নিমাণ করেবায়ো লেসার স্টিমুলেশন স্নায়ুর মেরামতিতে লেসার রেডিয়েশন ব্যবহৃত হতে পারেমুখের পক্ষাঘাতের চিকিৎসায় মুখমণ্ডলের নিউরোমাস্কুলার নিরোধক কৌশলপেশী মজবুত করতে ফিজিকাল থেরাপি অনুশালীনস্নায়ুকে শান্ত এবং শক্তিশালী করতে যোগা এবং ধ্যানঅস্ত্রোপ্রচার সংক্রান্ত পদক্ষেপস্নায়ুর দুর্বলতার পরিচালনায় স্বাস্থকর জীবনশৈলী ও সুষম খাদ্য গ্রহণ করা গুরুত্বপূর্ণ নাক দিয়ে পানি ঝরা হাঁচিকাশি সামান্য জ্বর ঠান্ডা লাগাঅতি সাধারণ অথচ খুবই ছোঁয়াচে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় কমবেশি প্রায় সকলেরই এই সমস্যা হয় তাই এ থেকে মুক্তির প্রাকৃতিক টিপস্ দেওয়া হল প্রতিকার ১ রাতে শোবার আগে সরষের তেল বা ঘি হালকা গরম করে শুঁকলে সর্দিঠান্ডা দূর হয় এবং প্রতিরোধ করে ২ রাতে খাবার সঙ্গে রসুন খেলেও সর্দিঠান্ডা দুর হয় ৩ সকালে চারটি তুলসী পাতা এবং চারটি গোল মরিচ খেলে ঠান্ডা লেগে আসা জ্বর উপশম হয় ৪ পুদিনাপাতা তুলসী পাতা কাঁচা আদা মধু মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা লাগা দ্রুত ভাল হয় ১ যাদের ঠান্ডা লেগেছে তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন কারণ এর ভাইরাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে এমনকি হাতের মাধ্যমেও ছড়ায় ২ পর্যাপ্ত খাওয়াদাওয়া করলে ও ঘুমালে শরীরে রোগপ্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে ৩ আপনার ঘরের তাপমাত্রা বেশি শুষ্ক করবেন না ৷ বেশি আর্দ্রও করবেন না এতে রোগপ্রতিরোধে সক্ষম হওয়া যায় সহজেই ৪ নিয়মিত লেবু খান লেবুতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি ৷ যা ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করে নাক দিয়ে পানি ঝরা হাঁচিকাশি সামান্য জ্বর ঠান্ডা লাগাঅতি সাধারণ অথচ খুবই ছোঁয়াচে আবহাওয়া পরিবর্তনের সময় কমবেশি প্রায় সকলেরই এই সমস্যা হয় তাই এ থেকে মুক্তির প্রাকৃতিক টিপস্ দেওয়া হল প্রতিকার ১ রাতে শোবার আগে সরষের তেল বা ঘি হালকা গরম করে শুঁকলে সর্দিঠান্ডা দূর হয় এবং প্রতিরোধ করে ২ রাতে খাবার সঙ্গে রসুন খেলেও সর্দিঠান্ডা দুর হয় ৩ সকালে চারটি তুলসী পাতা এবং চারটি গোল মরিচ খেলে ঠান্ডা লেগে আসা জ্বর উপশম হয় ৪ পুদিনাপাতা তুলসী পাতা কাঁচা আদা মধু মিশিয়ে খেলে ঠান্ডা লাগা দ্রুত ভাল হয় ১ যাদের ঠান্ডা লেগেছে তাদের কাছ থেকে দূরে থাকুন কারণ এর ভাইরাস নিঃশ্বাসের সঙ্গে এমনকি হাতের মাধ্যমেও ছড়ায় ২ পর্যাপ্ত খাওয়াদাওয়া করলে ও ঘুমালে শরীরে রোগপ্রতিরোধক্ষমতা বাড়ে ৩ আপনার ঘরের তাপমাত্রা বেশি শুষ্ক করবেন না ৷ বেশি আর্দ্রও করবেন না এতে রোগপ্রতিরোধে সক্ষম হওয়া যায় সহজেই ৪ নিয়মিত লেবু খান লেবুতে আছে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন সি ৷ যা ঠান্ডা লাগা প্রতিরোধ করে কিছু ঘরোয়া উপায় আছে যেসব খুব সহজেই এ বিরক্তি থেকে আমাদের বাঁচাতে পারে যেমন ১ উঁচু হয়ে শোন # ঠান্ডা ঠান্ডা আবহাওয়ায় নাক বন্ধ ভাব রোধ করতে শোয়ার সময় মাথাকে উঁচু করে শোবেন এতে মিউকাস কম তৈরি হয় সবচেয়ে ভালো হয় ছাদ বা সিলিংয়ের দিকে মুখ করে শুইলে ২ পেঁয়াজ # নাক বন্ধ রোধে পেঁয়াজ একটি ভালো সামাধান পেঁয়াজ নাকের সর্দি বের করে দিতে অনুঘটক হিসেবে কাজ করে নাকের বন্ধভাব রোধে খোসা ছাড়িয়ে পেঁয়াজ কেটে পাঁচ মিনিট নাকের কাছে রাখুন বিশেষজ্ঞরা বলেন এটি সাময়িকভাবে হলেও নাক বন্ধভাব দূর করতে সাহায্য করবে ৩ ঝাল জাতীয় খাবার খান # হ্যাঁ নাক বন্ধ রোধে ঝাল জাতীয় খাবার বেশ উপকারিএ ক্ষেত্রে ঝাল মরিচ খেতে পারেন এর মধ্যে থাকা ক্যাপসেসিন নাকের পথ পরিষ্কার করে নাক বন্ধ হওয়া রোধে সাহায্য করবে ৪ গরম ব্যাভারেজ # গরম চা অথবা কফি নাক বন্ধ রোধে ভালো কাজ করে চাকফির গরম ভাপ মিউকাসকে পাতলা করে বিশেষ করে গরম চা খেলে ঠান্ডায় ভালো বোধ করবেন ৫ ভাপ নেওয়া # গরম পানির মধ্যে কয়েক ফোঁটা মেনথল যোগ করুন এরপর আপনার মাথাকে একটি তোয়ালে দিয়ে ঢাকুন এবং গরম পানির ভাপ নিন এমনভাবে মাথা ঢাকুন যেন বাষ্প বাইরে বেরিয়ে না যায় তবে যেহেতু গরম পানির ব্যাপার তাই কাজটি করার সময় একটু সতর্ক থাকুন এই পদ্ধতিগুলো প্রাথমিকভাবে নাক বন্ধ রোধে সাহায্য করে তবে বেশি সমস্যা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নাক পরিষ্কারের ড্রপ ব্যবহার করতে পারেন আপনি রাতে খাটি সরষের তেল আঙ্গুল দিয়ে নাকে টানবেন হাতে মাখিয়ে পেটের নাভিতে মাখবেন একটু গলায় নিবেন আর সব শেষে তেল টা আপনি পায়ের তলায় এবং মাথার চাদিতে মেখে ঘুমাবেন আশা করি ফল পাবেন উপকার হবে ভাল থাকবেন আর কফ ভালো করতে খাটি মধু খান ভালো হয়ে যাবে এছাড়া চা খাবেন আদা দিয়ে আপনি দিনে কয়েকবার কয়েকটি তুলসী পাতা চিবান ও আস্তে আস্তে এর রস খাবেন লং চিবাতে পারেন এটাও গলা ফ্রি করতে সাহায্য করবে এছাড়াও ডাক্তারের পরামর্শ নিতে পারেন আপনি প্রতিদিন সকালে খালি পেটে পরিমান মতো তুলসী পাতার রস আর আদার রস মিশিয়ে খাবেন জ্বর কোন রোগ নয় এটা রোগের লক্ষণ বহিরাগত প্যাথোজেনের আক্রমণ শ্বাসনালীর সংক্রামণ মূত্রনালিতে সংক্রামণ ইত্যাদি কারণে জ্বর দেখা যায় বেশিদিন ধরে জ্বর থাকলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত কম ঘুমানো দুশ্চিন্তা হরমোনের পরিবর্তন অথবা জেনেটিক্যালি যে কোনো কারণেই হতে পারে ডার্ক সার্কেল বা চোখের নিচের কালো দাগ একদিনেই এই দাগ দূর হয় না এবং প্রতিদিন যত্ন না নিলে আবারও ফিরে আসবে এই কালো দাগ চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় • চোখের নিচের কালো দাগ দূর করেতে টমেটো খুবই উপকারী এক চা চামচ টমেটোর রসের সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চোখের নিচে লাগান ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন দিনে দুইবার অন্তত এই প্যাক লাগাতে হবে • আলু ভালো কর পেস্ট করে এর রস একটি কটন বলে নিয়ে চোখের ওপর ১৫ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন খেয়াল রাখবেন পুরো চোখ যেন ঢেকে থাকে এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন • টি ব্যাগ ব্যবহারের পর ফ্রিজে রেখে দিন ঠান্ডা হলে বের করে চোখ বন্ধ করে ১০ মিনিটের জন্য রেখে দিন প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার চোখের নিচের কালো দাগ দূর হবে • ঠান্ডা দুধে একটি কটন বল ভিজিয়ে চোখে লাগান ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে চোখের ফোলা ভাব কমে যায় এবং কালো দাগ দূর হয় • কমলার রসের সাথে দুইএক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে চোখের নিচে লাগান এটা কালো দাগ দূর করার পাশাপাশি চোখকে আরো উজ্জ্বল করে তোলে • শসার রস এবং আলুর রস একসাথে মিশিয়ে চোখে লাগান ১০ মিনিট পর হালকা ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখের চারপাশে বাদামের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন এতে চোখের কালো দাগ দূর হওয়ার পাশাপাশি চোখের চামড়া কুচকানো ভাবও দূর হবে আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি কম ঘুমানো দুশ্চিন্তা হরমোনের পরিবর্তন অথবা জেনেটিক্যালি যে কোনো কারণেই হতে পারে ডার্ক সার্কেল বা চোখের নিচের কালো দাগ একদিনেই এই দাগ দূর হয় না এবং প্রতিদিন যত্ন না নিলে আবারও ফিরে আসবে এই কালো দাগ চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় • চোখের নিচের কালো দাগ দূর করেতে টমেটো খুবই উপকারী এক চা চামচ টমেটোর রসের সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চোখের নিচে লাগান ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন দিনে দুইবার অন্তত এই প্যাক লাগাতে হবে • আলু ভালো কর পেস্ট করে এর রস একটি কটন বলে নিয়ে চোখের ওপর ১৫ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন খেয়াল রাখবেন পুরো চোখ যেন ঢেকে থাকে এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন • টি ব্যাগ ব্যবহারের পর ফ্রিজে রেখে দিন ঠান্ডা হলে বের করে চোখ বন্ধ করে ১০ মিনিটের জন্য রেখে দিন প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার চোখের নিচের কালো দাগ দূর হবে • ঠান্ডা দুধে একটি কটন বল ভিজিয়ে চোখে লাগান ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে চোখের ফোলা ভাব কমে যায় এবং কালো দাগ দূর হয় • কমলার রসের সাথে দুইএক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে চোখের নিচে লাগান এটা কালো দাগ দূর করার পাশাপাশি চোখকে আরো উজ্জ্বল করে তোলে • শসার রস এবং আলুর রস একসাথে মিশিয়ে চোখে লাগান ১০ মিনিট পর হালকা ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখের চারপাশে বাদামের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন এতে চোখের কালো দাগ দূর হওয়ার পাশাপাশি চোখের চামড়া কুচকানো ভাবও দূর হবে আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি কম ঘুমানো দুশ্চিন্তা হরমোনের পরিবর্তন অথবা জেনেটিক্যালি যে কোনো কারণেই হতে পারে ডার্ক সার্কেল বা চোখের নিচের কালো দাগ একদিনেই এই দাগ দূর হয় না এবং প্রতিদিন যত্ন না নিলে আবারও ফিরে আসবে এই কালো দাগ চোখের নিচের কালো দাগ দূর করার কিছু ঘরোয়া উপায় • চোখের নিচের কালো দাগ দূর করেতে টমেটো খুবই উপকারী এক চা চামচ টমেটোর রসের সঙ্গে এক চা চামচ লেবুর রস মিশিয়ে চোখের নিচে লাগান ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন দিনে দুইবার অন্তত এই প্যাক লাগাতে হবে • আলু ভালো কর পেস্ট করে এর রস একটি কটন বলে নিয়ে চোখের ওপর ১৫ মিনিটের জন্য ঢেকে রাখুন খেয়াল রাখবেন পুরো চোখ যেন ঢেকে থাকে এরপর ঠাণ্ডা পানি দিয়ে চোখ ধুয়ে ফেলুন • টি ব্যাগ ব্যবহারের পর ফ্রিজে রেখে দিন ঠান্ডা হলে বের করে চোখ বন্ধ করে ১০ মিনিটের জন্য রেখে দিন প্রতিদিন ব্যবহারে আপনার চোখের নিচের কালো দাগ দূর হবে • ঠান্ডা দুধে একটি কটন বল ভিজিয়ে চোখে লাগান ১০ মিনিট পর পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এতে চোখের ফোলা ভাব কমে যায় এবং কালো দাগ দূর হয় • কমলার রসের সাথে দুইএক ফোঁটা গ্লিসারিন মিশিয়ে চোখের নিচে লাগান এটা কালো দাগ দূর করার পাশাপাশি চোখকে আরো উজ্জ্বল করে তোলে • শসার রস এবং আলুর রস একসাথে মিশিয়ে চোখে লাগান ১০ মিনিট পর হালকা ম্যাসাজ করে ধুয়ে ফেলুন • রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে চোখের চারপাশে বাদামের তেল দিয়ে ম্যাসাজ করুন এতে চোখের কালো দাগ দূর হওয়ার পাশাপাশি চোখের চামড়া কুচকানো ভাবও দূর হবে আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি মাসিক চক্রের ১১ থেকে ১৪ তম দিনের মধ্যে একটি ডিম্ব ডিম্বাশয় থেকে মুক্ত হয় এবং ডিম্বনালী ধরে সামনে অগ্রসর হতে থাকে ডিম্বনালীতে থাকা অবস্থায় কোন শুক্রাণু যদি ডিম্বাণুটির সাথে মিলিত হয় তবে ডিম্বাণুটি নিষিক্ত হয় এবং সেই মহিলা গর্ভধারণ করে নিষিক্ত ডিম্বাণুটি জরায়ুর আস্তরণে অবস্থান নেয় এবং ক্রমান্বয়ে বিকশিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ শিশুদেহ গঠন করে কোন মহিলা যদি ডিম্বাণু মুক্ত হওয়ার কিছুদিন আগে অথবা ডিম্বাণু নিষিক্ত হওয়ার দিনে যৌন মিলন করে তবে শুক্রাণু ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হতে পারে ডিম্বাণুটি যদি ডিম্বনালীতে নিষিক্ত হতে না পারে তবে তা রজঃস্রাবের সাথে বের হয়ে যায় একবার রজঃস্রাব হওয়ার পর থেকে পরবর্তী রজঃস্রাবের আগে পর্যন্ত সময়কে একটি মাসিক চক্র হিসেবে গণনা করা হয় একজন মহিলার প্রথমবার রজঃস্রাব হওয়ার পর প্রতিমাসে ১ বার করে রজঃস্রাব হয় তবে কারো ক্ষেত্রে ২৮ দিনেও একবার করে রজঃস্রাব হতে পারে কারো ক্ষেত্রে এর থেকে কম বা বেশি ও হতে পারে একজন মহিলার প্রথমবার রজঃস্রাব হওয়ার পর প্রতিমাসে ১ বার করে রজঃস্রাব হয় রজঃস্রাবের প্রথম দিনকে মাসিক চক্রের প্রথম দিন হিসেবে গণনা করা হয় একবার রজঃস্রাব হওয়ার পর থেকে পরবর্তী রজঃস্রাবের আগে পর্যন্ত সময়কে একটি মাসিক চক্র হিসেবে গণনা করা হয় রজঃস্রাবের রক্তক্ষরণ বন্ধ হওয়ার পর ডিম্বাশয়ে একটি ডিম্ব পরিপক্ব হওয়া শুরু হয় এবং জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আবরণও পুনর্গঠিত হতে থাকে মাসিক চক্রের ১১ থেকে ১৪ তম দিনের মধ্যে ডিম্বটি ডিম্বাশয় থেকে মুক্ত হয় এবং ডিম্বনালী ধরে সামনে অগ্রসর হতে থাকে ডিম্বনালীতে থাকা অবস্থায় কোন শুক্রাণু যদি ডিম্বাণুটির সাথে মিলিত হয় তবে ডিম্বটি নিষিক্ত হয় নিষিক্ত ডিম্বাণুটি জরায়ুর আস্তরণে অবস্থান নেয় এবং ক্রমান্বয়ে বিকশিত হয়ে একটি সম্পূর্ণ শিশুদেহ গঠন করে সাধারণত মাসিক চক্রের ১১ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে ডিম্বনালী তে একটি পরিপক্ব ডিম্বাণু অবস্থান করে এবং এই সময় যদি কেউ যৌন মিলন করে তবে তার গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা আছে তবে একজন মেয়ের মাসিক চক্রে নানা কারণে বিঘ্ন ঘটতে পারে যেমন মানসিক চাপ দুঃখ ভ্রমণ শারীরিক পরিশ্রম ইত্যাদি আবার কমবয়সী মেয়েদের ক্ষেত্রে দেখা যায় মাসিক চক্র নিয়মিত হয় না আবার সবার জন্য মাসিক চক্রের সময়কাল সমান হয় না অতএব দিন গণনা করে কেউ যদি গর্ভাবস্থা এড়াতে চায় তবে তা ভুল সিদ্ধান্ত হবে গর্ভবতী হওয়ার জন্য একটি পরিপক্ব ডিম্বাণুকে শুক্রাণুর সাথে মিলিত হতে হয় কোন ডিম্বাণু যদি মাসিক চক্রের শেষে অপরিপক্ব অবস্থায় থাকে তবে তা রজঃস্রাবের সময় বের হয়ে যায় সাধারণত রজঃস্রাবের সময় অন্যকোন অনিষিক্ত ডিম্বাণু ডিম্বনালীর মধ্যে থাকে না সেজন্য রজঃস্রাবের সময় গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম তবে কখনো কখনো মাসিক চক্রে বিঘাত ঘটে এবং রজঃস্রাব হওয়া সত্ত্বেও ডিম্বনালীতে পরিপক্ব ডিম্বাণু থেকে যায় এমন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে আপনার গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা আছে যদিও একজন মেয়ের প্রথম মাসিক কবে হবে সেটা সঠিকভাবে কখনো বলা যায় না তবে প্রথম মাসিক হওয়ার আগের ১ মাসের মধ্যে সে যদি যৌন মিলন করে তবে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা আছে কারণ প্রথমবার মাসিক হওয়য়ার আগে একটি পরিপক্ব ডিম্বাণু ডিম্বাশয় থেকে মুক্ত হয়ে জরায়ুতে আসে এই ডিম্বাণু অনিষিক্ত অবস্থায় থেকে গেলে তা প্রথম রজঃস্রাবের সাথে বের হয় যায় অতএব প্রথমবার রজঃস্রাব হওয়ার আগেও একবার মাসিক চক্র সম্পন্ন হয় যার ফলে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যায় হ্যাঁ একবার যৌন মিলন করেও গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা আছে এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে মাসিক চক্রের উপর যৌন মিলনের সময় যদি কোন পরিপক্ব ডিম্বাণু ডিম্বনালীতে থাকে তবে সেই মেয়ে গর্ভবতী হতে পারে সন্তান জন্মদানের প্রথম ৬ মাসে সাধারণত একজন মেয়ে গর্ভবতী হতে পারে না তবে এর জন্য প্রয়োজন যে মহিলাটি শিশুকে নিবিড়ভাবে স্তন্যপান করান এবং তার ঋতুস্রাব এখনও আর শুরু হয়নি কারণ স্তন্যপান করানোর সময় নারীদেহে বিশেষ হরমোন সৃষ্টি হয় যা নতুন ডিম্বাণু পরিপক্ব হতে বাধা দেয় যদি উভয় সঙ্গী সকল প্রকার যৌনবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকে তবে যৌন মিলনে কোন অসুবিধা নেই তবে সহবাসের সময় খেয়াল রাখা উচিত যাতে পেটের উপর বেশি চাপ না পরে অবশিষ্ট শুক্রানুগুলোকে নারীদেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ধ্বংস করে ফেলে এবং রজঃস্রাবের সময় যোনীপথে বের হয়ে যায় একজন পুরুষ দুইধরণের শুক্রাণু তৈরি করে একধরণের শুক্রাণু কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় অপর ধরণের শুক্রাণু ছেলে সন্তানের বীর্যের মধ্যে উভয় ধরণের হাজার হাজার শুক্রাণু থাকে যৌন মিলনের সময় যেই ধরণের শুক্রাণু ডিম্বাণুতে আগে পৌঁছে নিষিক্ত করতে পারে ভূমিষ্ঠ সন্তান সেই লিঙ্গের হয় কোন দম্পতির শুধু ছেলে সন্তান অথবা শুধু মেয়ে সন্তান হলে সেজন্য কাউকে দোষ দেয়া যায় নাএকজন পুরুষ দুইধরণের শুক্রাণু তৈরি করে একধরণের শুক্রাণু কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় অপর ধরণের শুক্রাণু ছেলে সন্তানের বীর্যের মধ্যে উভয় ধরণের হাজার হাজার শুক্রাণু থাকে যৌন মিলনের সময় যেই ধরণের শুক্রাণু ডিম্বাণুতে আগে পৌঁছে নিষিক্ত করতে পারে ভূমিষ্ঠ সন্তান সেই লিঙ্গের হয় কোন ধরণের শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হবে তা স্বামীস্ত্রী কেউ প্রভাবিত করতে পারে না সেজন্য এর পিছনে কারো দ্বায় নেই আগত সন্তানের লিঙ্গ কোনভাবে তার পিতামাতা প্রভাবিত করতে পারে না একজন পুরুষ দুইধরণের শুক্রাণু তৈরি করে একধরণের শুক্রাণু কন্যা সন্তানের জন্ম দেয় অপর ধরণের শুক্রাণু ছেলে সন্তানের বীর্যের মধ্যে উভয় ধরণের হাজার হাজার শুক্রাণু থাকে যৌন মিলনের সময় যেই ধরণের শুক্রাণু ডিম্বাণুতে আগে পৌঁছে নিষিক্ত করতে পারে ভূমিষ্ঠ সন্তান সেই লিঙ্গের হয় কোন ধরণের শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হবে তা স্বামীস্ত্রী কেউ প্রভাবিত করতে পারে না জমজ সন্তান ২ ধরণের হতে পারে প্রথম ধরণের হলো তারা যারা দেখতে একই রকম এই ধরণের জমজ সন্তান একটি ডিম্বাণু থেকেই হয়ে থাকে ডিম্বাণু শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হওয়ার পর ডিম্বাণুটি ২ ভাগে বিভক্ত হয়ে গিয়ে ২ জন সন্তানের জন্ম দেয় এই জাতীয় যমজ সর্বদা একই লিঙ্গের হয় এবং তারা দেখতে একরকম ডিম্বাণু কেন বিভাজিত হয় সেটার কারণ এখনো অজানা দ্বিতীয় ধরণের জমজ সন্তান হল তারা যারা পরস্পর দেখতে ভিন্ন এধরণের ঘটনা ঘটতে পারে যখন ২টি ডিম্বাশয় থেকে একইসাথে ২টি ডিম্বাণু নির্গত হয় এবং সেগুলো ২টি ভিন্ন শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হয় এক্ষেত্রে একই গর্ভে বেড়ে ওঠা এবং একই বয়স হওয়া বাদে এই যমজ দুটি একই পিতামাতার অন্য সন্তানের মতো গর্ভবতী হলে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায় যেমন মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া স্তন ফুলে ওঠা ও নরম হয়ে যাওয়া গুপ্তস্থানে লোম বেড়ে যাওয়া স্তনবৃন্ত ও স্তনের আশেপাশের রঙ গাঢ় হয়ে যাওয়া অসুস্থতা অনুভব করা বমি করা ক্লান্ত অনুভব করা বিশেষ কোন খাবারের প্রতি অনীহা অথবা আকর্ষণ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি তবে সবার ক্ষেত্রেই সকল লক্ষণ দেখা যাবে না কিছু কিছু লক্ষণ দেখা গেলে যদি সন্দেহ হয় তবে কোন চিকিৎসাকেন্দ্রে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে হবে না মহিলার গর্ভবতী হওয়ার লক্ষণ প্রকাশ না পাওয়া পর্যন্ত একজন পুরুষ কখনো বুঝতে পারে না যদি কোন মহিলা গর্ভধারণ পরীক্ষা করতে চায় তবে তবে তার মাসিক এর দিন পর্যন্ত অপেক্ষা করা উচিত স্বাভাবিক মাসিক চক্রে যেদিন মাসিক হওয়ার কথা সেদিন যদি না হয় তবে গর্ভধারণ পরীক্ষায় ফলাফল ধরা পড়তে পারে এর আগে পরীক্ষা করালে যদি সেই মহিলা গর্ভবতী হয়েও থাকে তবুও ভুল ফলাফল আসবে সবার প্রথমে আপনার সঙ্গীকে জানানো উচিত এবং পরবর্তী কার্যক্রম নির্ধারণ করা উচিত তারপর অবশ্যই আপনার পিতামাতাকে জানানো উচিত যদি কোন অস্বাভাবিক পরিস্থিতিতে গর্ভবতী হয়ে থাকেন তবে হয়ত পিতামাতাকে জানানো কষ্টকর হবে তবে পিতামাতার সাথে ভালো সম্পর্ক গর্ভাবস্থায় অনেক সাহায্যের হতে পারে শারীরিক দিক থেকে বিবেচনায় প্রথম ৩ মাসের মধ্যেই ডাক্তার এর পরামর্শ নেওয়া উচিত তবে অনেকে অপরিকল্পিতভাবে গর্ভবতী হলে গর্ভপাতের চিন্তা করে এক্ষেত্রে অবশ্যই মনে রাখা উচিত গর্ভপাত যেমন নৈতিক ও ধর্মীয় দৃষ্টিকোন থেকে নিষিদ্ধ তেমনি স্বাস্থের জন্যেও ঝুঁকিপূর্ণ ১৮ থেকে ২০ বছরের আগে কেউ যদি গর্ভবতী হয় তবে নানাধরনের সমস্যার সম্মুখীন হতে হয় যেমনঃ উচ্চ রক্তচাপ দীর্ঘায়িত প্রসববেদনা অকাল সন্তান জন্মদান কম ওজনের সন্তান জন্মদান এমনকি গর্ভপাতও হতে পারে এর কারণ ১৮ থেকে ২০ বছরের আগে একজন মেয়ের শরীর শারীরিকভাবে সন্তান বহন করার জন্য প্রস্তুত থাকে না সেজন্য কম বয়সে কখনো গর্ভধারণ করা ঠিক নয় আপনি ৩৫ বছর বয়সের উর্ধ্বে সন্তান নিলে স্বাস্থ্য বিষয়ক ও প্রসবকালীন নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেনআরও বেশি সমস্যা হতে পারে যদি আপনি ইতিমধ্যে অনেক বাচ্চা প্রসব করে থাকেন এর কারণে জরায়ুর পেশী দুর্বল হয়ে যায় ফলে রক্তক্ষরণ দীর্ঘায়িত প্রসববেদনা এবং জরায়ু ছিড়ে যাওয়ার মত সমস্যা দেখা দিতে পারে বয়স্ক মহিলাদের একের পর এক গর্ভাবস্থা এবং প্রসবের সময় মারা যাওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে বিভিন্ন কারণে একজন পুরুষ বন্ধ্যা হতে পারে যেমন জন্মগত ত্রুটির কারণে শুক্রাণু তৈরি করতে না পারা অথবা অপর্যাপ্ত শুক্রাণু তৈরি করা গনোরিয়া সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রনালী বন্ধ হয়ে যাওয়া যৌন রোগ মানসিক বা শারীরিক চাপ অবসাদ ইত্তাদির কারণে যৌন উত্তেজনা অনুভব না করা ইত্যাদি কিছু কিছু কারণে অনেক সময় সাময়িক বন্ধ্যাত্ব দেখা যায় যেমন অসুস্থতা মদ্যপান ওষুধের অপব্যবহার অস্ব্যাস্থকর খাবার দুঃখবেদনা ইত্যাদি বিভিন্ন কারণে একজন মহিলা বন্ধ্যা হতে পারে যেমন মানসিক বা শারীরিক কষ্টের জন্য ডিম্বাণু তৈরি না হওয়া যৌন রোগের জন্য ডিম্বনালী বন্ধ হয়ে যাওয়া স্বেচ্ছায় গর্ভপাতের ফলে আভ্যন্তরীণ জননাঙ্গের ক্ষতিসাধন ইত্যাদি কিছু কিছু কারণে অনেক সময় সাময়িক বন্ধ্যাত্ব দেখা যায় যেমন অসুস্থতা মদ্যপান ওষুধের অপব্যবহার অস্ব্যাস্থকর খাবার দুঃখবেদনা ইত্যাদি সাধারণত বিবাহিত দম্পতির সন্তান নিতে এক থেকে দেড় বছর সময় লাগে কারো এর থেকে বেশি আবার কারো এর থেকে কম সময় লাগতে পারে তবে যদি সবভাবে চেষ্টা করেই গর্ভবতী হতে অসুবিধা হয় তবে ডাক্তার এর পরামর্শ নেওয়া উচিত একজন ডাক্তারই শুধু উভয় ব্যক্তিকে পরীক্ষা করে নিশ্চিত বলতে পারে কার অসুবিধার জন্য সন্তান নিতে সমস্যা হচ্ছে এবং সেই অনুযায়ী পরামর্শ দিতে পারে হ্যাঁ হতে পারে নিয়মিত মাসিক চক্র নির্দেশ করে একজন মহিলার নিয়মিত ডিম্বাণু তৈরি হচ্ছে তবে এর কোন নিশ্চয়তা নেই যে তার ডিম্বনালী ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বাণুটি জরায়ুতে যথাযথভাবে পরিবহন করে অতএব একজন মহিলার নিয়মিত মাসিক হলেও সে বন্ধ্যা হতে পারে হ্যাঁ হতে পারে একজন পুরুষের বীর্যপাত হলেও যদি তার বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ কম থাকে বা শুক্রাণুগুলো যদি যথেষ্ট পরিপুষ্ট না থাকে তবে সেই পুরুষ বন্ধ্যা হতে পারে বন্ধ্যাত্বের অন্যতম প্রধান কারণ হলো যৌনবাহিত রোগ যৌন সংক্রমণজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়া এড়িয়ে আপনি বন্ধ্যাত্ব থেকে নিজেকে রক্ষা করতে পারেন এছাড়াও অন্যান্য যেসব ব্যবস্থা নিতে পারেন সেগুলো হলোঃ মদ্যপান না করা ডাক্তার এর পরামর্শ ছাড়া ওষুধ ব্যবহার না করা স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া ইত্যাদি বন্ধ্যাত্ব বিভিন্ন কারণে হতে পারে পুরুষের ক্ষেত্রে জন্মগত ত্রুটির কারণে শুক্রাণু তৈরি করতে না পারা অথবা অপর্যাপ্ত শুক্রাণু তৈরি করা গনোরিয়া সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হয়ে শুক্রনালী বন্ধ হয়ে যাওয়া যৌন রোগ মানসিক বা শারীরিক চাপ অবসাদ ইত্তাদির কারণে যৌন উত্তেজনা অনুভব না করা ইত্যাদি আবার নারীদের ক্ষেত্রে মানসিক বা শারীরিক কষ্টের জন্য ডিম্বাণু তৈরি না হওয়া যৌন রোগের জন্য ডিম্বনালী বন্ধ হয়ে যাওয়া স্বেচ্ছায় গর্ভপাতের ফলে আভ্যন্তরীণ জননাঙ্গের ক্ষতিসাধন ইত্যাদি কোন কারণে বন্ধ্যাত্ব দেখা দিয়েছে সেটা চিহ্নিত করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করে বন্দ্যাত্বের চিকিৎসা করা যায় কোন পরিস্থিতিতে গর্ভপাত করা হচ্ছে তার উপর নির্ভর করে যদি চিকিৎসাকেন্দ্রে প্রশিক্ষিত ব্যক্তি বা ডাক্তার এর তত্ত্বাবধানে গর্ভপাত করানো হয় তবে সাধারণত কোন ঝুঁকি থাকে না তবে অপ্রশিক্ষিত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে গর্ভপাত করানো হলে আঘাতপ্রাপ্ত জরায়ু জননাঙ্গে সংক্রমণ প্রচুর রক্তক্ষরণ বন্ধ্যাত্ব এমনকি মৃত্যু পর্যন্ত হতে পারে কেউ যদি অপরিকল্পিত ভাবে গর্ভবতী হয়ে যায় তবে সে গর্ভপাতের সিদ্ধান্ত নিতে পারে ডিম্বনালী যদি কোন কারণে বন্ধ হয়ে যায় তবে ডিম্বাণু জরায়ুর পরিবরতে ডিম্বনালীতে স্থির হয় ডিম্বনালীতে কোন প্রকার সংক্রমণ হলে সেটি বন্ধ হয়ে যেতে পারে ডিম্বনালীতে ডিম্বাণু স্থির হয়ে গেলে নানা সমস্যা হতে পারে ডিম্বাণু যদি ডিম্বনালীতে স্থির হয় তবে নালীগুলির পাতলা দেয়ালগুলি ক্রমবর্ধমান শিশুর স্থান দিতে পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রসারিত হতে পারে না ফলে নালীগুলো ফেটে গিয়ে রক্তক্ষরণ হতে পারে এমতাবস্থায় অবশ্যই হাসপাতালে যেতে হবে গর্ভপাতের প্রধান কারণ হলো অপরিপক্ব ডিম্বাণুর নিষিক্ত হওয়া যদি সেই ডিম্বাণু থেকে শিশু জন্ম নেয় তবে সেই শিশুর মানসিক বা শারীরিক অক্ষমতার সম্ভাবনা থাকে এছাড়াও গর্ভাবস্থায় কোন রোগে আক্রান্ত হওয়া (যেমন ম্যালেরিয়া সিফিলিস) গর্ভাবস্তায় পেটের উপর আকস্মিকভাবে অনেক বেশি চাপ পরা জননাঙ্গে কোনপ্রকার অসুবিধা থাকা ইত্যাদি গর্ভপাতের কারণ হতে পারে প্রতিবন্ধী সন্তান জন্মদানের অন্যতম প্রধান কারণ হলো গর্ভাবস্থায় কোন রোগে আক্রান্ত হওয়া বিশেষত কেউ যদি ম্যালেরিয়া বা সিফিলিস রোগে আক্রান্ত হয় তবে প্রতিবন্ধী সন্তান হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় প্রতিবন্ধী সন্তান জন্মদানের অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছেঃ ওষুধের অপব্যবহার মদ্যপান ধূমপান ইত্যাদি কিছুক্ষেত্রে প্রসবের সময় শিশুর মস্তিষ্কে অত্যধিক চাপ পড়ার কারণেও প্রতিবন্ধকতা দেখা যায় এজন্য প্রশিক্ষিত ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে সর্বদা সন্তান প্রসব করা উচিত সুস্থ সন্তানের জন্মদান নিশ্চিত করার জন্য কিছু ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় যেমনসুষম খাবার খাওয়া ভারী কাজকর্ম না করা পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া পর্যাপ্ত পরিমাণ ঘুমানো মদ্যপান না করা প্রতি মাসে ডাক্তারের কাছে গিয়ে নিজের স্বাস্থ্য এবং শিশুর স্বাস্থ্যের বৃদ্ধি পর্যবেক্ষন করা সকল প্রকার রোগ সংক্রমণের ব্যপারের সতর্ক থাকা (বিশেষত ম্যালেরিয়া) ইত্যাদি সন্তান প্রসবের সময় অবশ্যই হাসপাতালে যাওয়া উচিত এবং অভিজ্ঞ ব্যক্তির তত্ত্বাবধানে সন্তান প্রসব করা উচিত এগুলো মেনে চললে সুস্থ সন্তান জন্মদানের সম্ভাবনা বহুগুনে বেড়ে যায় যোনিপথের ভেতরে বীর্যপাত করা না হলে প্রেগন্যান্ট হবে না তবে বীর্য যদি যোনী পথের আসে পাশে কোথাও লেগে থাকে সেখান থেকেও প্রেগন্যান্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে অনাকাক্ষিত প্রেগনেন্সি এড়ানোর জন্য অবশ্যই কনডম ব্যবহার করবেন আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি যোনী পথের ভিতরে বীর্যপাত করা না হলে প্রেগন্যান্ট হবে না তবে বীর্য যদি যোনী পথের আসে পাশে কোথাও লেগে থাকে সেখান থেকেও প্রেগন্যান্ট হওয়ার ঝুঁকি থাকতে পারে অনাকাক্ষিত প্রেগনেন্সি এড়ানোর জন্য অবশ্যই কনডম ব্যবহার করবেন আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি খুব বেশি না মাতৃত্ববোধ সকল যন্ত্রণা ভুলিয়ে দেয় সকল স্তন্যপায়ী প্রাণীদের ক্ষেত্রে সন্তান জন্মদান একটি শরীরবৃত্তীয় ব্যাপার মানুষও এদের অন্তর্গত নবজাতক মায়ের দুই ঊরুর মাঝপথ কিংবা যোনিপথ দিয়ে বের করা হয় হাসপাতালের ডাক্তার এবং নার্সরা এই প্রক্রিয়াতে সাহায্য করে থাকেন যেসব ধমনী আপনার হৃতপিন্ডকে রক্ত সরবরাহ করেকোনো কারণে সেগুলোর রক্ত প্রবাহ যদি আংশিক ভাবে বাধাগ্রস্ত হয়তাহলে আপনার বুকে ব্যথা হবে যাকে বিজ্ঞানের ভাষায় এনজাইনা বলা হয় সাধারণত আপনর বদহজম হবার মত মৃদু কিন্তু অস্বস্তিকর একটি অনুভূতি হবে কিন্তু যদি আপনার প্রচন্ড ব্যথা হয়সাধারনত বুকের মাঝখানে (তাছাড়াও আপনার বাহু চোয়ালঘাড় এবং পেট এও অনুভূত হতে পারে)তাহলে বুঝতে হবে সমস্যা গুরুতর সাধারণত আপনর বদহজম হবার মত মৃদু কিন্তু অস্বস্তিকর একটি অনুভূতি হবে কিন্তু যদি আপনার প্রচন্ড ব্যথা হয়সাধারনত বুকের মাঝখানে (তাছাড়াও আপনার বাহু চোয়ালঘাড় এবং পেট এও অনুভূত হতে পারে)তাহলে বুঝতে হবে সমস্যা গুরুতর এনজাইনা সাধারনত দুশ্চিন্তা বা শারীরিক পরিশ্রমের পার্শপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দেখা দেয় এবং ১০মিনিট এর ভেতর এর তীব্রতা কমে আসে ওষুধ হিসেবে সাধারনত নাইট্রেট বড়ি বা স্প্রে ব্যবহার করা হয়ে থাকে বুকে ব্যথায় শুধু আপনার বুকেই নয় আপনার শরীরের উপরের অংশে ঘাড় থেকে পাঁজর পর্যন্তও ব্যথা হয় যদিও বুকে ব্যথা অনেক ধরনের অসুখেরই লক্ষণ হতে পারে তারপরও এটাকে গুরুত্বের সাথে নেয়া উচিত কারণ বুকে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকেরও লক্ষণ বুকে ব্যথা অনেক ধরনের অসুখেরই লক্ষণ হতে পারে শারীরিক পরিশ্রমের কারণেও হতে পারে বুকে ব্যথা হার্ট অ্যাটাকেরও লক্ষণ সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের নিকটাপন্ন হবেন শারীরিক পরিশ্রমের কারণে ব্যথাটা শুরু হয় বিশ্রামে ব্যথা কমে যায় হৃদরোগের ব্যথাটা খুব বেশী জোরে হয় এবং মনে হয় চেপে আসছে আপনার বুকে ব্যথার পাশাপাশি অন্য লক্ষণও দেখা দেয় যেমন দম ফুরিয়ে যাওয়া বমি বমি ভাব অনেক ঘামানো হঠাৎ করে শির শির করে ব্যথা শুরু হয়ে হাতে ছড়িয়ে পড়া (সাধারণত বাঁ হাতে)ইত্যাদি যেসব কারণে আপনার করোনারী হৃদ্রোগের সম্ভাবনা থাকতে পারে সেগুলো হলো ধূমপান উচ্চ রক্তচাপ বা হাইপারটেনশন ডায়াবেটিস শরীরে বেশি মাত্রার কোলেস্টেরোল স্থুলতা অথবা পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস ইত্যাদি যদি শারীরিক পরিশ্রমের কারণে আপনার বুকে ব্যথা হয় এবং কাজকর্ম বন্ধ করে ফেললে ব্যথা কমে যায় তবে আপনার অ্যানজাইনা হয়েছে বুকের ব্যথা বা চাপা ভাবটা বুক থেকে আপনার বাঁ হাত ঘাড় ও পিঠে ছড়িয়ে পড়বে হার্টে রক্তের সীমিত চলাচলের কারণে অ্যানজাইনা হয় এর কারণ হচ্ছে আপনার হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ করে এমন তিনটি ধমনীই সরু হয়ে গিয়েছে হার্ট পর্যাপ্ত অক্সিজেন পায় না বলে আপনার বুকে ব্যথা হয় যদি উপরে বর্ণনা করা লক্ষণগুলো আপনার ক্ষেত্রে দেখা দেয় কিন্তু ব্যথাটা ১৫২০মিনিটের চাইতে বেশীক্ষণ থাকে তবে আপনার হার্ট অ্যাটাক হচ্ছে হার্ট অ্যাটাকের সময় আপনার মনে হবে আপনার বুকে খুব জোরে কিছু চাপ দিচ্ছে বা ভারী কিছু আপনার বুকের উপর চারপাশ থেকে চাপ দিচ্ছে অ্যানজাইনা মৃদু অল্প সময়ের জন্য হয় সাধারণত শারীরিক পরিশ্রমের জন্য হয় হার্ট অ্যাটাক হলে ব্যথাটা ওষুধ (গ্লাইসেরিল ট্রাইনাইট্রাইট স্প্রে যেটা ব্যবহারে অ্যানজাইনার ব্যথা দ্রুত উপশম হয়) নেয়ার পরও থেকে যায় বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই হার্ট অ্যাটাক বিশ্রামকালে অথবা ঘুমের মধ্যে হয় এটা প্রচণ্ড ঘাম ও বমি বমি ভাব সহ অনেক লক্ষণের সাথেই হয় বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বুকে ব্যথা হয় হার্ট সংক্রান্ত কারণে বুকে ব্যথা হওয়ার সাধারণ কারণ গুলো হল ১ বুকজ্বলা এবং গ্যাসট্রোঅসোফ্যাগাল রিফ্লাক্স ডিজিজ (জিওআরডি) এই অসুস্থতায় আপনার পাকস্থলী যে এসিড ছাড়ে সেটি আপনার খাদ্যনালীতে চলে যায় ২ অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা ৩ পেশীতে টান পড়লে ৪ শিনায় ব্যথা যদি শুয়ে থাকার ফলে আপনার বুকে ব্যথা বেড়ে যায় তবে এটা আপনার পাকস্থলী থেকে বের হয়ে আসা এসিড যা আপনার খাদ্যনালীতে চলে এসেছে তার ফলে হতে পারে এ সমস্যা কমবেশি অনেকেরই হয় এবং একে বুকজ্বলা এবং গ্যাসট্রোঅসোফ্যাগাল ডিজিজ বলে জীবনযাপনের ধরণ বদলে এবং দরকার পড়লে ওষুধের মাধ্যমে এই সমস্যা দূর করা সম্ভব তবে খেয়াল রাখা উচিত যে হার্টের ব্যথা শুয়ে থাকা অবস্থায় হতে পারে উদাহরণস্বরূপ অ্যানজাইনা ডেকুবিটাস যা হার্ট ফেইলের মত অবস্থা এতে বুকে চাপ পড়ে এবং সুঁই ফোটানোর মত ব্যথা হয় তাই শুয়ে থাকা অবস্থায় আপনার যদি এমন ব্যথা হয় জা আপনি বুঝতে পারছেননা আপনার উচিত চিকিৎসকের কাছে যাওয়া বুকে ব্যথা হয়ে বুক নরম হয়ে যাওয়ার অনেক কারণ আছে যদি বুকে ব্যথা হয় বুক নরম হয়ে যায় কিন্তু কোন ফোলাফোলা ভাব না থাকে তবে এটি সম্ভবত আপনার বুকের পেশীতে টান পরার কারণে হয়েছে এতে অনেক ব্যথা হয় তবে বিশ্রাম নিলে ধীরে ধীরে ব্যথা কমে যায় এবং সময়ের সাথে আপনার পেশী ঠিক হয়ে যায় যদি আপনার পাঁজরের কাছে ব্যথা নরম ও ফোলাফোলা ভাব থাকে তবে আপনার সম্ভবত কস্ট্রোকন্ড্রিটিস বা টিয়েটজা নামক সমস্যা হয়েছে এটা হওয়ার কারণ হচ্ছে যে তরুণাস্থি দিয়ে পাঁজর আপনার বক্ষাস্থির সাথে যুক্ত সেখানে প্রদাহ হওয়া কয়েক সপ্তাহ পর ব্যথার ওষুধের নিলে আপনার এই ব্যথা চলে যাবে দুশ্চিন্তার কারণেও আপনার বুকে ব্যথা হতে পারে আপনি দুশ্চিন্তা করার সাথে সাথে আপনার শারীরিক সমস্যা দেখা দিতে পারে যেমন বুকে ব্যথা দম ফুরিয়ে যাওয়া প্যালপিটিশন আপনার চিকিৎসক দুশ্চিন্তার কারণে হওয়া বুকে ব্যথার চিকিৎসা হিসেবে আপনাকে মনস্তাত্ত্বিক চিকিৎসা যেমন কাউন্সেলিং নিতে বলতে পারেন প্লুরিসি হচ্ছে ফুসফুসের চারিদিকে যে দুইস্তরের পর্দা থাকে সেখানে প্রদাহ হওয়া এই দুটো স্তর পরস্পরের সাথে ঘর্ষণের ফলে তীক্ষ্ণ ছুরিকাঘাতের মত ব্যথা হয় নিশ্বাস নেয়ার সাথে বা লম্বা শ্বাস নিলে এই ব্যথাটা হয় হালকা নিশ্বাস নিয়ে প্লুরিসির ব্যথা থেকে মুক্তি পাওয়া যায় ব্যথাটা আইবুপ্রফেন দিয়ে কমানো যায় এর মধ্যে আপনার চিকিৎসক প্লুরিসির কারণ খুঁজে বের করবেন শিঙ্গলেস হচ্ছে স্নায়ু এবং তার আশেপাশের এলাকায় সংক্রমণ এটি হার্পিস ভ্যারিসেলাযোস্টার ভাইরাসের কারণে হয় এই ভাইরাসের কারণে চিকেনপক্স হয় শিঙ্গলস এর র‍্যাশ সাধারণত শরীরের ডান অথবা বাম পাশে হয় কিন্তু শরীরের মধ্যবর্তী অংশে হয়না ( মধ্যবর্তী রেখা হচ্ছে শরীরের একটি কাল্পনিক রেখা যেটা আপনার দুই চোখের মাঝখান থেকে আপনার নাভির আগ পর্যন্ত কল্পনা করা একটি রেখা) স্তনপ্রদাহ হচ্ছে সংক্রমণের কারণে স্তনে ব্যথা হওয়া এবং ফুলে যাওয়া এটা বেশী হয় স্তন্যদানকালীন সময়ে সংক্রমণ দূর করতে অ্যান্টিবায়োটিক নিতে বলা হয় আপনাকে এর জন্য আপনার শিশুকে স্তন্যদানের পদ্ধতি পরিবর্তন করতে হতে পারে আপনার চিকিৎসক আপনাকে এব্যাপারে আরও পরামর্শ দিবেন আপনার হৃদস্পন্দন যখন বিশেষভাবে বেড়ে যায় তখন আপনার বুক ধড়ফড় করার অনুভূতি হয় এটা সাধারণত ক্ষতিকারক নয় এবং কয়েক সেকেন্ড থেকে কয়েক মিনিটের মধ্যে থেমে যায় কয়েক মুহূর্তের জন্য আপনার মনে হতে পারে যে আপনার হৃদপিণ্ড ধক ধক করছে বা অনিয়মিতভাবে স্পন্দিত হচ্ছে আপনার গলায় ও ঘাড়েও অস্বস্তিকর অনুভূতি হতে পারে বুক ধড়ফড় করাটা ভীতিকর হতে পারে তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি আপনার হৃদপিণ্ডের কোন সমস্যার লক্ষন নয় তবে বুক ধড়ফড় করার সাথে সাথে মাথা ঘোরা বা বুকে চাপ অনুভূত হলে তা হৃদরোগের উপসর্গ হতে পারে যদি আপনার বুক ধড়ফড় করার সাথে অন্য কোন উপসর্গ দেখা দেয় তাহলে চিকিৎসকের কাছে যান জীবনযাপনের ধরনের কারণে আপনি কোন কারণে ভীত উদ্বিগ্ন অথবা উত্তেজিত হলে অ্যাড্রেনালিন নামের একধরনের হরমোন নিঃসৃত হয় যার প্রভাবে আপনার বুক ধড়ফড় করতে পারে মশলাযুক্ত ভারি খাবার খেলে অতিরিক্ত ক্যাফেইনযুক্ত পানীয় বা মদ পান করলে ধূমপান করলে অথবা মাদক গ্রহন করলে বুক ধড়ফড় করতে পারে যদি আপনার মনে হয় জীবন যাপনের ধরনের কারনে আপনার বুক ধড়ফড় করছে তাহলে বিশ্রামের বিভিন্ন উপায়ের মাধ্যমে এবং ব্যায়ামের মাধ্যমে আপনার উপরের চাপ (stress levels) কমানোর চেষ্টা করুন আপনি কফি এবং অন্যান্য শক্তিবর্ধক পানীয় পান করা ও মাদকদ্রব্য সেবন করাও এড়িয়ে চলুন হঠাৎ আতঙ্কিত হওয়া (Panic attacks) বুক ধড়ফড় করার আরেকটি কারণ বুক ধড়ফড় করার সাথে সাথে যদি আপনি দুশ্চিন্তা মানসিক চাপ ও আতঙ্ক বোধ করেন তাহলে আপনি হয়ত প্যানিক অ্যাটাক বা হঠাৎ আতঙ্কে আক্রান্ত হয়েছেন প্যানিক অ্যাটাকের কারণে আপনি উদ্বেগ দুশ্চিন্তা বা ভয়ে অভিভুত হয়ে পড়তে পারেন এবং আপনার বমি ঘাম কাঁপুনি ও বুক ধড়ফড় হতে পারে প্যানিক অ্যাটাক খুবই ভীতিকর ও প্রবল হতে পারে কিন্তু সাধারণত এটি বিপদজনক নয় ঔষধের পার্শ্বপতিক্রিয়ার ফলে বুক ধড়ফড় করতে দেখা যায় নারীদের মাসিক গর্ভাবস্থা অথবা মেনোপোজ চলাকালীন সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারনে বুক ধড়ফড় করতে পারে সাধারনত এগুলো অল্প সময় থাকে এবং এর জন্য উদ্বিগ্ন হবার দরকার নেই নারীদের মাসিক গর্ভাবস্থা অথবা মেনোপোজ চলাকালীন সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারনে বুক ধড়ফড় করতে পারে সাধারনত এগুলো অল্প সময় থাকে এবং এর জন্য উদ্বিগ্ন হবার দরকার নেই নারীদের মাসিক গর্ভাবস্থা অথবা মেনোপোজ চলাকালীন সময়ে হরমোনের পরিবর্তনের কারনে বুক ধড়ফড় করতে পারে সাধারনত এগুলো অল্প সময় থাকে এবং এর জন্য উদ্বিগ্ন হবার দরকার নেই (১)পা ভিজিয়ে রেখে ঘুমাতে যাবেন না চিকিৎসকদের মতে শরীরের তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ করে পা তাই পা ভিজে রাখলে শরীরের তআপে ভারসাম্য থাকে না এজন্য ঘুমাতে যাওয়ার আগে পা ভালোভাবে মুছে নিন শুকনো পায়ে বিছানায় ঘুমাতে যান (২)প্রতিদিন ঘুমাতে যাওয়ার আগে নির্দিষ্ট সময় রাখুন ঘুমের জন্য হাতে বেশি সময় থাক বা না থাক ঘুমানোর জন্য একটা নির্দিষ্ট সময়ে তৈরি করুন ঘনঘন সময় বদলালে আমাদের বায়োলজিক্যাল ক্লক সে সময়ের সঙ্গে পাল্লা দিতে পারে নাফলে ব্যাঘাত ঘটে ঘুমের এছাড়া সুস্থ থাকতে দৈনিক সাত থেকে আট ঘণ্টা ঘুমের জন্য বরাদ্দ রাখুন (৩)মোবাইল ফোন থেকে দূরে থাকুন ঘুমের সবচেয়ে বেশি ব্যাঘাত ঘটায় বৈদ্যুতিক সরঞ্জাম তাই ঘুমাতে যাওয়ার আগে পর্যন্ত হোয়াটসঅ্যাপ কিংবা ফেসবুক থেকে বিরত থাকুন নানা কারণের ওপর সবচেয়ে ভয়ঙ্কর বলে মনে করন (৪) অনেকের অভ্যাস থাকে ঘুমানোর সময় বই পড়া কিন্তু বিজ্ঞান বলছে এটাকে এড়িয়ে চলুন এর আগে দীর্ঘ সময় চোখের ওপর চাপ পরে মস্তিষ্ক একটু বেশি থাকে তাই দেরিতে ঘুম আসে(৫)ঘুমোতে যাওয়ার দু ঘণ্টা আগে রাতের খাবার ৪ ঘণ্টা আগেই খেয়ে নিন সেদিনের চা বা কফি তাহলে সহজেই অল্প সময়ের ভিতরে ঘুমাতে পারবেন চা কিংবা কফি আমাদের শরীরের সেন্ট্রাল নার্ভাস সিস্টেমকে উত্তেজিত করে এছাড়া রাতে খাদ্য হজম প্রক্রিয়া অত্যন্ত ধীর গতিতে চলে তাই ঘুমানোর আগে এসব এড়িয়ে চলুন (৬)বিছানা কিন্তু তোশক ঘুমে ব্যাঘাত ঘটার কারণ খেয়াল রাখুন এসবের গুণগত মান উন্নত হয় (৭)এছাড়া আপনি ঘুমের সময় অত্যধিক টেনশন করবেন না আপনি শুয়ে শুয়ে যদি সমস্ত কিছু চিন্তা করতে থাকেন তাহলে আপনার খুব সহজ ঘুম আসবেনা আপনি সময় দীর্ঘ শ্বাস নিন এভাবে ঘুমানোর আগে ১০১৫ বার করুন তাহলে দেখবেন আস্তে আস্তে আপনার ঘুম এসে যাচ্ছে অনিদ্রা সবচেয়ে সাধারণ ঘুমের ব্যাধি পর্যাপ্ত সময় আর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অনিদ্রায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তির জন্য ঘুমিয়ে পড়া বা ঘুমিয়ে থাকা দুটোই কঠিন হয়ে পড়ে এমনও না যে তাঁকে রাতে দেরিতে ঘুমোতে হয়েছে বা সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হয়েছে তবুও ভালো ঘুম হয়নি অনিদ্রা ঘুমের মান ও মাত্রা দুটকেই প্রভাবিত করে ইন্সম্নিয়া বা অনিদ্রায় ভোগা ব্যক্তির সারাদিন ক্লান্ত এবং অবসন্ন লাগে আপনার অনিদ্রা হয়ে থাকতে পারে যদি ১ আপনার রাতে ঘুমিয়ে পড়তে অসুবিধা হয় ২ আপনার দিনের বেলা নিয়মিতভাবে ঝিমুনি ভাব থাকে এবং আপনি সব সময় ক্লান্তি আর অবসাদ অনুভব করেন ৩ আপনার যেকোনো কাজে মনোযোগ বা মনোনিবেশ করতে অসুবিধে হয় কখনও কখনও আপনি সাধারন জিনিস ভুলে যান এর ফলে আপনি প্রায়ই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি করে ফেলেন ৪ আপনার মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে এবং আপনার সহ্যক্ষমতা কমে যায় ৫ আপনি নিয়মিত মাথা ব্যাথা বা পেটব্যথা অনুভব করেন ৬ আপনি ঘুমানোর অনেক আগে থেকেই ঘুমের চিন্তা করতে শুরু করেন আপনার অনিদ্রা হয়ে থাকতে পারে যদি ১ আপনার রাতে ঘুমিয়ে পড়তে অসুবিধা হয় ২ আপনার দিনের বেলা নিয়মিতভাবে ঝিমুনি ভাব থাকে এবং আপনি সব সময় ক্লান্তি আর অবসাদ অনুভব করেন ৩ আপনার যেকোনো কাজে মনোযোগ বা মনোনিবেশ করতে অসুবিধে হয় কখনও কখনও আপনি সাধারন জিনিস ভুলে যান এর ফলে আপনি প্রায়ই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি করে ফেলেন ৪ আপনার মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে এবং আপনার সহ্যক্ষমতা কমে যায় ৫ আপনি নিয়মিত মাথা ব্যাথা বা পেটব্যথা অনুভব করেন ৬ আপনি ঘুমানোর অনেক আগে থেকেই ঘুমের চিন্তা করতে শুরু করেন আপনার অনিদ্রা হয়ে থাকতে পারে যদি ১ আপনার রাতে ঘুমিয়ে পড়তে অসুবিধা হয় ২ আপনার দিনের বেলা নিয়মিতভাবে ঝিমুনি ভাব থাকে এবং আপনি সব সময় ক্লান্তি আর অবসাদ অনুভব করেন ৩ আপনার যেকোনো কাজে মনোযোগ বা মনোনিবেশ করতে অসুবিধে হয় কখনও কখনও আপনি সাধারন জিনিস ভুলে যান এর ফলে আপনি প্রায়ই অনিচ্ছাকৃত ত্রুটি করে ফেলেন ৪ আপনার মেজাজ খিটখিটে হয়ে থাকে এবং আপনার সহ্যক্ষমতা কমে যায় ৫ আপনি নিয়মিত মাথা ব্যাথা বা পেটব্যথা অনুভব করেন ৬ আপনি ঘুমানোর অনেক আগে থেকেই ঘুমের চিন্তা করতে শুরু করেন যারা মানসিক চাপ মানসিক অবসাদ দুশ্চিন্তা বা অন্যান্য মানসিক সমস্যায় ভোগেন তাঁদের মধ্যে অনিদ্রার প্রবনতা বেশি দেখা যায় এছাড়াও অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে শারীরিক সমস্যাওষুধ মদ এবং মাদক দ্রব্য অনিয়মিত ঘুমের অভ্যেস এবং পরিবেশ বার্ধক্য যারা মানসিক চাপ মানসিক অবসাদ দুশ্চিন্তা বা অন্যান্য মানসিক সমস্যায় ভোগেন তাঁদের মধ্যে অনিদ্রার প্রবনতা বেশি দেখা যায় এছাড়াও অন্যান্য কারণের মধ্যে রয়েছে শারীরিক সমস্যাওষুধ মদ এবং মাদক দ্রব্য অনিয়মিত ঘুমের অভ্যেস এবং পরিবেশ বার্ধক্য অনিদ্রা সবচেয়ে সাধারণ ঘুমের ব্যাধি পর্যাপ্ত সময় আর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অনিদ্রায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তির জন্য ঘুমিয়ে পড়া বা ঘুমিয়ে থাকা দুটোই কঠিন হয়ে পড়ে এমনও না যে তাঁকে রাতে দেরিতে ঘুমোতে হয়েছে বা সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হয়েছে তবুও ভালো ঘুম হয়নি অনিদ্রা ঘুমের মান ও মাত্রা দুটকেই প্রভাবিত করে ইন্সম্নিয়া বা অনিদ্রায় ভোগা ব্যক্তির সারাদিন ক্লান্ত এবং অবসন্ন লাগে অনিদ্রা সবচেয়ে সাধারণ ঘুমের ব্যাধি পর্যাপ্ত সময় আর সুযোগ থাকা সত্ত্বেও অনিদ্রায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তির জন্য ঘুমিয়ে পড়া বা ঘুমিয়ে থাকা দুটোই কঠিন হয়ে পড়ে এমনও না যে তাঁকে রাতে দেরিতে ঘুমোতে হয়েছে বা সকালে তাড়াতাড়ি উঠতে হয়েছে তবুও ভালো ঘুম হয়নি অনিদ্রা ঘুমের মান ও মাত্রা দুটকেই প্রভাবিত করে ইন্সম্নিয়া বা অনিদ্রায় ভোগা ব্যক্তির সারাদিন ক্লান্ত এবং অবসন্ন লাগে অনিদ্রার চিকিৎসার প্রথম ধাপ হল অনিদ্রার কারন নির্ধারণ করা ডাক্তার উপযুক্ত ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে কগ্নিটিভ বিহেভিওরিয়াল থেরাপির পরামর্শ দিতে পারেন অনিদ্রার চিকিৎসার প্রথম ধাপ হল অনিদ্রার কারন নির্ধারণ করা ডাক্তার উপযুক্ত ওষুধের সঙ্গে সঙ্গে কগ্নিটিভ বিহেভিওরিয়াল থেরাপির পরামর্শ দিতে পারেন অনিদ্রা আপনার দৈনন্দিন জীবন প্রভাবিত করে কিন্তু আপনি আপনার জীবনে সামান্য কিছু রদলবদল করলেই অনিদ্রা থেকে কিছুটা হলেও মুক্তি পেতে পারবেন দিনেরবেলা নিয়মিত ব্যায়াম করুন এবং সচল থাকুন এতে রাতে ভালো ঘুম হয় চা কফি কম খান বিশেষত রাতের দিকে মদ সিগারেট যথা সম্ভব এড়িয়ে চলুন ঘুমের পরিবেশ আরামদায়ক ও শান্ত হওয়া উচিৎ ঘুমাতে যাওয়ার আগে নিজেকে ঘুমের জন্য প্রস্তুত করুন আপনার সাধারণ কাজকর্ম যদি রাতে ঘুমের অভাবে খতিগ্রস্ত হয় ডাক্তারের পরামর্শ অবশ্যই নিন মাসিক অনিয়মিত বা অস্বাভাবিক হয়ে যাওয়া যা যেকোনো এক পর্যায়ে সকল নারীর ক্ষেত্রেই এক বা একাধিক বার সম্মুখীন হতে হয় এতে ভয়ের কিছু নেই এটি সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার পর পর অর্থাৎ বয়োসন্ধি কালে হয় তবে বিভিন্ন কারণে এর ব্যতিক্রম হতে পারে এই সমস্যা যা হয় তা হলো নিয়মিত মাসিক চক্রের বহির্ভূত রক্তপাত বা মাসিক হয়ে যাওয়া নিয়মিত মাসিক চক্রটি হচ্ছে ২৩৩৫ দিনের এবং তা ৩৭ দিন স্থায়ী হয়ে থাকে যদি কোনো কারণে আগেই বা পরে অথবা এই মাসিক চক্রের মধ্যবর্তী সময়ে মাসিক হয়ে যায় খুব বেশি দিন ব্লিডিং হলে অথবা স্পটিংখুব কম রক্তপাত যা বাদামি /গোলাপি রঙের অর্থাৎ মাসিকের রক্তের থেকে হালকা রক্তপাত ও তরল হতে পারে তখন এটি DUB হিসেবে গণনা হয় সাধারণতো যেকারণে হয় তা হলো বয়োসন্ধি ও রজবন্ধী কালের হরমোনাল ইমব্যালেন্স বা হরমোনের বিভন্ন তারতম্যের জন্য হয়ে থাকে স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া তে মাসিক নিয়মিত হতে ২৫ বছর পর্যন্ত সময় লেগে থাকে তাই এই সময় পর্যন্ত অন্য কোনো উপসর্গ না দেখা দিলে ভয়ের কিছু নেই এটি হরমোনাল কারণে হয় যা হরমোন ব্যালান্স এর সাথে সাথে সমন্বিত হয়ে যায় এছাড়া যেসকল উপসর্গের জন্য হতে পারে তা হলো ১ পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম ২ ইউটেরিনে পলিপ ও ফাইব্রয়েড ৩ এন্ডোমেট্রিওসিস ৪ Sexually transmitted disease যেসকল লক্ষনগুলো দেখা দেয় ১ মাসিক ২৩ দিনের পূর্বেই হয়ে যাওয়া ও তারিখ মতন না হওয়া ২ অতিরিক্ত রক্তপাত ৩ মাসিকের পরে হটাৎ করে কোনো দিন ২৩ দিন অল্প রক্তপাত ৪ স্তন এ ব্যথা ৫ শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া খুব বেশি ফ্যাকাশে দেখা যাওয়া ( Anaemia ) যেসকল পরীক্ষা নিরীক্ষা সাধারণত করা হয় তলপেটের আল্ট্রাসাউন্ড রক্ত পরীক্ষা ও প্রয়োজন বোধে এন্ডমেট্রিয়াল বায়োপসি এটি সাধারণত উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হরমোনাল কারণে হলে তা হরমোনাল ওষুধের মাধ্যমে মাসিক চক্র নিয়মিত করা হয়ে থাকে আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি মাসিক অনিয়মিত বা অস্বাভাবিক হয়ে যাওয়া যা যেকোনো এক পর্যায়ে সকল নারীর ক্ষেত্রেই এক বা একাধিক বার সম্মুখীন হতে হয় এতে ভয়ের কিছু নেই এটি সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার পর পর অর্থাৎ বয়োসন্ধি কালে হয় তবে বিভিন্ন কারণে এর ব্যতিক্রম হতে পারে এই সমস্যা যা হয় তা হলো নিয়মিত মাসিক চক্রের বহির্ভূত রক্তপাত বা মাসিক হয়ে যাওয়া নিয়মিত মাসিক চক্রটি হচ্ছে ২৩৩৫ দিনের এবং তা ৩৭ দিন স্থায়ী হয়ে থাকে যদি কোনো কারণে আগেই বা পরে অথবা এই মাসিক চক্রের মধ্যবর্তী সময়ে মাসিক হয়ে যায় খুব বেশি দিন ব্লিডিং হলে অথবা স্পটিংখুব কম রক্তপাত যা বাদামি /গোলাপি রঙের অর্থাৎ মাসিকের রক্তের থেকে হালকা রক্তপাত ও তরল হতে পারে তখন এটি DUB হিসেবে গণনা হয় সাধারণতো যেকারণে হয় তা হলো বয়োসন্ধি ও রজবন্ধী কালের হরমোনাল ইমব্যালেন্স বা হরমোনের বিভন্ন তারতম্যের জন্য হয়ে থাকে স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া তে মাসিক নিয়মিত হতে ২৫ বছর পর্যন্ত সময় লেগে থাকে তাই এই সময় পর্যন্ত অন্য কোনো উপসর্গ না দেখা দিলে ভয়ের কিছু নেই এটি হরমোনাল কারণে হয় যা হরমোন ব্যালান্স এর সাথে সাথে সমন্বিত হয়ে যায় এছাড়া যেসকল উপসর্গের জন্য হতে পারে তা হলো ১ পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম ২ ইউটেরিনে পলিপ ও ফাইব্রয়েড ৩ এন্ডোমেট্রিওসিস ৪ Sexually transmitted disease যেসকল লক্ষনগুলো দেখা দেয় ১ মাসিক ২৩ দিনের পূর্বেই হয়ে যাওয়া ও তারিখ মতন না হওয়া ২ অতিরিক্ত রক্তপাত ৩ মাসিকের পরে হটাৎ করে কোনো দিন ২৩ দিন অল্প রক্তপাত ৪ স্তন এ ব্যথা ৫ শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া খুব বেশি ফ্যাকাশে দেখা যাওয়া ( Anaemia ) যেসকল পরীক্ষা নিরীক্ষা সাধারণত করা হয় তলপেটের আল্ট্রাসাউন্ড রক্ত পরীক্ষা ও প্রয়োজন বোধে এন্ডমেট্রিয়াল বায়োপসি এটি সাধারণত উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হরমোনাল কারণে হলে তা হরমোনাল ওষুধের মাধ্যমে মাসিক চক্র নিয়মিত করা হয়ে থাকে আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি মাসিক অনিয়মিত বা অস্বাভাবিক হয়ে যাওয়া যা যেকোনো এক পর্যায়ে সকল নারীর ক্ষেত্রেই এক বা একাধিক বার সম্মুখীন হতে হয় এতে ভয়ের কিছু নেই এটি সাধারণত মাসিক শুরু হওয়ার পর পর অর্থাৎ বয়োসন্ধি কালে হয় তবে বিভিন্ন কারণে এর ব্যতিক্রম হতে পারে এই সমস্যা যা হয় তা হলো নিয়মিত মাসিক চক্রের বহির্ভূত রক্তপাত বা মাসিক হয়ে যাওয়া নিয়মিত মাসিক চক্রটি হচ্ছে ২৩৩৫ দিনের এবং তা ৩৭ দিন স্থায়ী হয়ে থাকে যদি কোনো কারণে আগেই বা পরে অথবা এই মাসিক চক্রের মধ্যবর্তী সময়ে মাসিক হয়ে যায় খুব বেশি দিন ব্লিডিং হলে অথবা স্পটিংখুব কম রক্তপাত যা বাদামি /গোলাপি রঙের অর্থাৎ মাসিকের রক্তের থেকে হালকা রক্তপাত ও তরল হতে পারে তখন এটি DUB হিসেবে গণনা হয় সাধারণতো যেকারণে হয় তা হলো বয়োসন্ধি ও রজবন্ধী কালের হরমোনাল ইমব্যালেন্স বা হরমোনের বিভন্ন তারতম্যের জন্য হয়ে থাকে স্বাভাবিক শারীরিক প্রক্রিয়া তে মাসিক নিয়মিত হতে ২৫ বছর পর্যন্ত সময় লেগে থাকে তাই এই সময় পর্যন্ত অন্য কোনো উপসর্গ না দেখা দিলে ভয়ের কিছু নেই এটি হরমোনাল কারণে হয় যা হরমোন ব্যালান্স এর সাথে সাথে সমন্বিত হয়ে যায় এছাড়া যেসকল উপসর্গের জন্য হতে পারে তা হলো ১ পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম ২ ইউটেরিনে পলিপ ও ফাইব্রয়েড ৩ এন্ডোমেট্রিওসিস ৪ Sexually transmitted disease যেসকল লক্ষনগুলো দেখা দেয় ১ মাসিক ২৩ দিনের পূর্বেই হয়ে যাওয়া ও তারিখ মতন না হওয়া ২ অতিরিক্ত রক্তপাত ৩ মাসিকের পরে হটাৎ করে কোনো দিন ২৩ দিন অল্প রক্তপাত ৪ স্তন এ ব্যথা ৫ শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়া খুব বেশি ফ্যাকাশে দেখা যাওয়া ( Anaemia ) যেসকল পরীক্ষা নিরীক্ষা সাধারণত করা হয় তলপেটের আল্ট্রাসাউন্ড রক্ত পরীক্ষা ও প্রয়োজন বোধে এন্ডমেট্রিয়াল বায়োপসি এটি সাধারণত উপসর্গ অনুযায়ী চিকিৎসা করা হয় তবে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে স্বাভাবিক হরমোনাল কারণে হলে তা হরমোনাল ওষুধের মাধ্যমে মাসিক চক্র নিয়মিত করা হয়ে থাকে আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি প্রথম মাসিকের সুস্পষ্ট দিন অনুমান অসম্ভব হলেও আপনার শারীরিক কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে বুঝা যায় যে আপনার শরীর প্রথম মাসিকের জন্য পরিণত সেই সকল শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছে দুই ঊরুর মাঝে এবং বগলে লোম জন্মানো সাদাস্রাব স্তনযুগলের আকৃতি পরিবর্তন মাসিক শুরু হওয়ার দিন থেকে গাঢ় লাল বা বাদামী স্রাব লক্ষ্য করতে পারেন মাসিক যেকোনো সময় যেকোনো মুহূর্তে যেকোনো জায়গায় শুরু হয়ে জেতে পারে যখন আপনি লক্ষ্য করবেন যে আপনার মাসিক শুরু হয়ে গিয়েছে তখন আপনার কাপড় চোপড় রক্ষা করতে হবে সেজন্য প্যাড স্বাস্থ্যসম্মত ন্যাপকিন ব্যাবহার করতে পারেন এবং সাথে রাখতে পারেন এসব সাথে না থাকলে আপনি টিস্যুপেপার থেকে প্যাড তৈরি করে নিতে পারেন অধিকাংশ ক্ষেত্রে অতিরিক্ত মাসিক এর কোন কারন থাকে না তবু কিছু রোগ বা ঔষধ এমনটা করতে পারে যেমন –(১) জরায়ুর মাংসে টিউমার (২) ডিম্বাশয়ে সিস্ট (৩) রক্ত পাতলা করার ঔষধ বা রক্ত জমাট বাধতে দেয় না এমন ঔষধ সাধারণত ১০ থেকে ১৬ বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের মাসিক শুরু হয় বেশিরভাগ সময়ই এটি শুরু হয় ১২১৩ বছর বয়সের মধ্যে মেয়েদের মাসিক ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে মেনোপজ (menopause) শুরুর আগ পর্যন্ত মাসিক চলতে থাকবে (১) স্তনে ব্যাথা (২) খিটমিটে মেজাজ (৩) পিঠ ব্যাথা (৪) বিভিন্ন দাগ দেখা দেয়া (৫) খুবই আবেগি বা মন খারাপ হয়ে যাওয়া মাসিক শুরু হয়ে গেলে এই উপসর্গগুলো আর থাকে না অনেক মেয়ে এবং মহিলারা তলপেট পিঠ এবং যোনিপথে ব্যাথা অনুভব করেন এগুলোকে অনেক সময় মাসিকের ব্যাথা বলা হয় প্যারাসিটামল খেলে এই ব্যাথা কমতে পারে বয়ঃসন্ধিকালে অনিয়মিত পিরিয়ড সাধারণ বিষয় এবং এর জন্য চিকিৎসা তেমন প্রয়োজনীয় নয়আপনি ডাক্তারের সাথে কথা বলতে পারেন যদি আপনার পিরিয়ডে নিম্নে বর্ণিত পরিবর্তন গুলো লক্ষ্য করেনঃ (১) ভারী পিরিয়ড হলে প্রতি এক বা দুই ঘণ্টায় প্যাড পরিবর্তন করা লাগলে(২) পিরিয়ড সাত দিনের বেশি থাকলে (৩) পিরিয়ড হবার পর পরবর্তী পিরিয়ড ৩ সপ্তাহের মধ্যে শুরু হলে (৪) বেশি রক্তপাত হলে(৫) যৌনমিলনের পরে রক্তপাত হলে একজন নারীর মাসের একটি নির্দিষ্ট সময়ের জন্য সাধারনত 28 বা তার বেশি দিন পর পর যোনি থেকে রক্তপাত হয় মেয়েদের বয়স বৃদ্ধির সাথে ডিম্বাশয়ে প্রতিমাসে একটি করে ডিম্বাণু উৎপাদন শুরু হয় উৎপাদিত ডিম্বাণু যদি পুরুষের শুক্রাণুর সাথে মিলিত না হতে পারে তবে তা অনিষিক্ত থেকে যায় ডিম্বাণু অনিষিক্ত থেকে গেলে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুর আভ্যন্তরীন স্তরের সাথে যোনীপথে রক্তের সাথে বের হয়ে আসে এটি বয়ঃসন্ধকাল শুরু হয় এবং মেনোপজ হওয়ার পূর্ব পর্যন্ত অব্যাহত থাকে যা সাধারণত মধ্য পঞ্চাশের (গড় বয়স 52) থেকে চল্লিশের দশকের শেষের দিকে হয়ে থাকে এটি নারীর ডিম্ব উৎপাদন ও যৌন সুস্থতার প্রকাশ প্রতিটি মাসিক চক্র সময় হরমোন ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বৃদ্ধি পায় ফলে গর্ভের র্আস্তরণ পুরু হতে থাকে একটি সম্ভাব্য গর্ভাবস্থার প্রস্তুতি জন্য ডিম্ব ফ্যালোপিয়ান টিউব থেকে নিচে ভ্রমণ করে এবং যদি এটি একটি শুক্রাণুর সাথে মিলিত এবং নিষিক্ত হয় একটি গর্ভাধারণের সম্ভাবনা ঘটতে পারে ডিম প্রায় ২৪ ঘন্টা বেঁচে থাকে এটা নিষিক্ত না হলে শরীরের মধ্যে শোষিত হয়ে যায় একসময় গর্ভের আস্তরণ খশে পড়ে এবং যোনি হতে রক্তে মিশে আপনার শরীরের মধ্যে থেকে বেরিয়ে আসবে এই সময়টাই হল মাসিক (এটা মাঝে মাঝে মাসিক প্রবাহ হিসাবে উল্লেখ করা হয়েছে) আপনার উর্বর সময় (যখন আপনি গর্ভবতী হতে পারেন) হল আপনার ডিম্বাণু উৎপাদন সময়ের কাছাকাছি যা মহিলাদের জন্য 1214 দিন পর্যন্ত থাকে পরবর্তী মাসিকের শুরুর আগ পর্যন্ত আপনি গর্ভবতী হতে পারবেন না যদি আপনি ডিম্বাণু উৎপাদন না করেন ডিম্বস্ফোটনকে বাধা দেওয়া হয় গর্ভনিরোধ কিছু হরমোন পদ্ধতি দ্বারা যেমন গর্ভনিরোধক বড়ি গর্ভনিরোধক প্যাচ এবং গর্ভনিরোধক ইনজেকশন ডিম্বস্ফোটন আপনার শরীর আপনার মাসিক চক্র সময় বিভিন্ন সময়ে হরমোনের বিভিন্ন পরিমাণে উৎপন্ন হয় ফলে আপনার শরীর এবং আবেগ পরিবর্তন হতে পারে উদাহরণস্বরূপ যদি আপনার যোনি নিঃসরণ আপনার মাসিক চক্র দ্বারা পরিবর্তন হয় তবে ডিম্বস্ফোটন সময় প্রায় তারা পাতলা ও তরল হয়ে যায় দেখতে কাঁচা ডিমের সাদা অংশের মত একটি অংশ থাকে আপনার স্তন ফোলা এবং বেদনাদায়ক হতে পারে মেয়েদের বয়স বৃদ্ধির সাথে ডিম্বাশয়ে প্রতিমাসে একটি করে ডিম্বাণু উৎপাদন শুরু হয় উৎপাদিত ডিম্বাণু যদি পুরুষের শুক্রাণুর সাথে মিলিত না হতে পারে তবে তা অনিষিক্ত থেকে যায় ডিম্বাণু অনিষিক্ত থেকে গেলে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুর আভ্যন্তরীন স্তরের সাথে যোনীপথে বের হয়ে আসে উপড়ে উল্লিখিত কারণে ঋতুস্রাব হয়ে থাকে ব্রণ এর সমস্যা আসলেই খুবই বিরক্তিকর ব্রণ দুর করতে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয় সেই নিয়ম গুলো হলওঃ ১) নিয়মিত ৮১০ গ্লাস পানি পান করুন ২) ৬৮ ঘন্টা ঘুমানো ৩) সাপ্তাহিক ১ বার করে আপনার ব্যবহার এর জিনিশ গুলো যেমন আপনার তোয়ালে বেডশিট বালিশের কাভার চিরুনি ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন ৪) স্ট্রেস থাকলে স্ট্রেস দুর করার চেষ্টা করুন স্ট্রেস এর চাপ ও চেহারা এ পরে ব্রণ উঠে ৫)২বার করে মুখ ধুবেনসপ্তাহে ৩ দিন শ্যাম্পু করবেনএতে ত্বক ও মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকে ৬)অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলবেন ৭) কোষ্ঠকাঠিন্য এর কারণ এও ব্রণ হয় তাই এটি এড়িয়ে চলবেন ৮) তৈলাক্ত ত্বক হলে দুধ জাতীয় খাবার খাওয়া কমাবেন ফাস্টফুড খাওয়া কমাবেন ৯) নিম পাতা এবং তাজা কাঁচা হলুদ এবং কালো জিরা মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খুব অল্প পরিমান এ খাবেন আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি ব্রণ এর সমস্যা আসলেই খুবই বিরক্তিকর ব্রণ দুর করতে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয় সেই নিয়ম গুলো হলওঃ ১) নিয়মিত ৮১০ গ্লাস পানি পান করুন ২) ৬৮ ঘন্টা ঘুমানো ৩) সাপ্তাহিক ১ বার করে আপনার ব্যবহার এর জিনিশ গুলো যেমন আপনার তোয়ালে বেডশিট বালিশের কাভার চিরুনি ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন ৪) স্ট্রেস থাকলে স্ট্রেস দুর করার চেষ্টা করুন স্ট্রেস এর চাপ ও চেহারা এ পরে ব্রণ উঠে ৫)২বার করে মুখ ধুবেনসপ্তাহে ৩ দিন শ্যাম্পু করবেনএতে ত্বক ও মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকে ৬)অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলবেন ৭) কোষ্ঠকাঠিন্য এর কারণ এও ব্রণ হয় তাই এটি এড়িয়ে চলবেন ৮) তৈলাক্ত ত্বক হলে দুধ জাতীয় খাবার খাওয়া কমাবেন ফাস্টফুড খাওয়া কমাবেন ৯) নিম পাতা এবং তাজা কাঁচা হলুদ এবং কালো জিরা মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খুব অল্প পরিমান এ খাবেন আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি ব্রণ এর সমস্যা আসলেই খুব ই বিরক্তিকর ব্রণ দুর করতে কিছু নিয়ম কানুন মেনে চলতে হয় সেই নিয়ম গুলো হলওঃ ১) নিয়মিত ৮১০ গ্লাস পানি পান করুন ২) ৬৮ ঘন্টা ঘুমানো ৩) সাপ্তাহিক ১ বার করে আপনার ব্যবহার এর জিনিশ গুলো যেমন আপনার তোয়ালে বেডশিট বালিশের কাভার চিরুনি ভালো করে ধুয়ে ফেলবেন ৪) স্ট্রেস থাকলে স্ট্রেস দুর করার চেষ্টা করুন স্ট্রেস এর চাপ ও চেহারা এ পরে ব্রণ উঠে ৫)২বার করে মুখ ধুবেনসপ্তাহে ৩ দিন শ্যাম্পু করবেনএতে ত্বক ও মাথার ত্বক পরিষ্কার থাকে ৬)অতিরিক্ত তৈলাক্ত খাবার ভাজাপোড়া এড়িয়ে চলবেন ৭) কোষ্ঠকাঠিন্য এর কারণ এও ব্রণ হয় তাই এটি এড়িয়ে চলবেন ৮) তৈলাক্ত ত্বক হলে দুধ জাতীয় খাবার খাওয়া কমাবেন ফাস্টফুড খাওয়া কমাবেন ৯) নিম পাতা এবং তাজা কাঁচা হলুদ এবং কালো জিরা মিশিয়ে প্রতিদিন সকালে খুব অল্প পরিমান এ খাবেন আশা করি আপনাকে সাহায্য করতে পেরেছি ব্রণ হলে ত্বকের উপর এক ধরনের গোটা ওঠে যাতে ব্যথা করে এবং দাগ সৃষ্টি হয় এগুলো সবচেয়ে দেখা যায় চেহারায় তবে পিঠে কাঁধে বা নিতম্বেও হতে পারে ● ব্রণের জায়গাটি খুঁটে ফেলা বা সেখানে চাপ দেয়া এড়িয়ে চলুন কারণ এর ফলে জায়গাটিতে জ্বালা করতে পারে এবং দাগ সৃষ্টি যেতে পারে ● ফার্মাসিতে বিক্রি হয় এমন হালকা ধরনের ফেসওয়াশ (mild face wash) ব্যবহার করুন ● ব্রণ হয় বিশেষ ধরনের ব্যাকটেরিয়ার কারণে আপনি আপনার ত্বক যত কম স্পর্শ করবেন এই ব্যাকটেরিয়া আপনার ত্বকে তত অল্প ছড়াবে ● স্বল্প আকারের ব্রণের চিকিৎসার জন্য বেঞ্জয়েল পারক্সাইড (benzoyl peroxide) যুক্ত জেল বা ক্রিম ব্যবহার করুন এ ব্যাপারে ডাক্তার বা ফার্মাসিস্টের পরামর্শ নিন ● ছোট ব্রণের উপর টুথপেস্ট লাগিয়ে দিতে পারেন টুথপেস্টের বেকিং সোডার কারনে ব্রন শুকিয়ে যায় যদি আপনি এর চিকিৎসা করাতে না চান তবে শুধু বেকিং সোডা লাগালেও একই কাজ হবে এটি সম্ভবত সবচেয়ে বড় ভুল ধারণা ব্রণ শুধু মানুষের সৌন্দর্যকেই ব্যহত করেনা মানুষের নিজের উপর আস্থা ও কমিয়ে দেয় হাজারো নারী পুরুষ টিনেজার এবং প্রাপ্তবয়স্করা ব্রণ এবং ব্রণের কারণে সৃষ্ট দাগের কারণে বিষণ্ণ থাকেন শুধুমাত্র ওষুধ এবং প্রসাধণী দিয়ে এই সমস্যার সমাধান সম্ভব নয় দুর্ভাগ্যবশত যাদের প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ব্রণ হয় তা পুরাপুরি ভাল করা সম্ভব নয় হরমন পরিবর্তন খাবার লাইফস্টাইল এবং ঘুমের ধরণ মানুষের সবাভাবিক ত্বকেও ব্রণের আবির্ভাব ঘটাতে পারে অনেকদিন ধরে অ্যান্টিবায়োটিক খেলে সেটি কাজ না ও করতে পারে ব্রণ মূলত ব্যাক্টেরিয়া দিয়ে হয় কিছু কিছু ব্যাক্টেরিয়ার বিরুদ্ধে অনেকদিন ধরে এক ওষুধ দিলে তা আর পরে কাজ করেনা তবে আশা হারানোর কোন কারণ নেই সবাস্থ্যসম্মত জীবণধারণ ব্রণ প্রতিরোধ এ সহায়ক যাদের সেনসেটিভ ত্বক তারা প্রসাধনী পরিবর্তন করে দেখতে পারেন কারন এক প্রসাধনী সব সময় ভাল কাজ না ও করতে পারে আমরা এই কথা অনেকবার শুনেছি ব্রণ স্পর্শ করবেন না ব্রণ নিজে নিজেই চলে যাবে অনেকের ক্ষেত্রে ব্রণ কখনই যায়না ছোট থেকে বড় হয়ে পুরো মুখে ছড়িয়ে পড়ে যখন চলে যায় মুখে দাগ রেখে যায় তাই আগে থেকেই ডারমাটোলজিস্টের কাছে যাওয়া ভালো এটি ভুল ধারণা ব্রণের সাথে পরিচ্ছন্নতার সম্পর্ক নেই অনেক সময় যাদের অনেক বেশি ব্রণ থাকে তারা অনেকবার মুখ ধোয় এতে মুখের প্রাকৃতিক তেল বের হয়ে মুখের রন্ধ্র বন্ধ করে দেয় এবং ব্যাক্টেরিয়া এতে সংখ্যা বৃদ্ধি করে দিনে দুইবার মুখ ধোয়া উচিৎ এতে মুখ ময়লা থেকে দূরে থাকবে তবে বেশি বেশি ধোয়া ও ভাল নয় যা সেনসেটিভ ত্বকে সমস্যার সৃষ্টি করে সতেরশো দশকে একটি ভুল ধারনা ছিল যেটি অভিভাবকরা বলতেন যে বিয়ের পূর্বে যৌন মিলন এবং মৈথুন করলে ব্রণ হয় টিনেজার রা ব্রণের শিকার হয় বয়ঃসন্ধিকালে বিদেশে এমনকি বাংলাদেশে এই সময় কিশোর কিশোরী যৌন মিলন নিয়ে উৎসুক হয়ে উঠে তবে যৌনমিলন এবং ব্রণের মাঝে কোন সম্পর্ক নেই ছেলেদের হরমন টেস্টস্টেরন এবং ডাইহাইড্রটেস্টোস্টেরন ব্রণ তৈরি করে তবে এগুলা যৌনমিলনের সাথে সম্পর্কিত না ফাস্টফুড এবং ব্রণের মাঝে যদিও কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি তারপরও তৈলাক্ত হাত দিয়ে ত্বক স্পর্শ করলে ব্রণ হতে পারে এগুলো হজমে সমস্যা সৃষ্টি করে যা ব্রন তৈরিতে সাহায্য করে বয়ঃসন্ধি কালে ছেলে এবং মেয়ে উভয়ের শরীর টেসটোস্টেরন হরমোন দ্বারা বেশি প্রভাবিত হয় টেসটোস্টেরন চামড়ার উপর ছোট ছোট গ্রন্থি তৈরি করে যা থেকে অতিরিক্ত তেল তৈরি হয় ফলে ব্রন তৈরি হয় যখন নিজের ওজন কমাতে চেষ্টা করেন তখন আপনি যত দ্রুত সম্ভব এর ফল পেতে চান ওজন দ্রুত কমালে তা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যকর ওজন রক্ষায় আপনাকে সাহায্য করবে না এর ফলে আপনার স্বাস্থ্য ঝুঁকির সম্মুখিনও হতে পারে সবচেয়ে ভাল উপায় হচ্ছে আপনার খাদ্যাভ্যাস এবং দৈহিক পরিশ্রমের কাজে একটি স্বাস্থ্যকর পরিবর্তন নিয়ে আসা যা আপনাকে নিরাপদ এবং স্থায়ীভাবে ওজন কমাতে সাহায্য করবে যদি আপনি ওজন কমানোর চেষ্টা করেন তবে প্রতি সপ্তাহে ওজন কমানোর নিরাপদ মাত্রা হচ্ছে ০৫ থেকে ১ কেজি অর্থাৎ প্রতি সপ্তাহে ১ থেকে ২ পাউন্ড এরচেয়ে দ্রুত ওজন হ্রাস পেলে আপনার স্বাস্থ্য পুষ্টিহীনতা পিত্তাশয়ের পাথর এবং দূর্বলতা অনুভবের মত ঝুঁকিতে পড়তে পারে অতি উৎসাহী খাদ্যাভ্যাসের (এক্ষেত্রে কয়েক সপ্তাহের জন্য কেবল খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন নিয়ে আসা) ফলে আপনার ওজন দ্রুত কমে গেলেও তা ভবিষ্যতে স্বাস্থ্যকর ওজন রক্ষায় আপনাকে সাহায্য করবে না তবে আপনি যদি দ্রুত ওজন কমাতে চান তবে তা আপনাকে পুষ্টিহীনতা পিত্তাশয়ের পাথর অবসাদ সারাদিন ক্লান্ত থাকার দিকে ধাবিত করবে এতে করে আপনার ত্বকের স্বাভাবিক উজ্জ্বলতাও হারিয়ে যেতে পারে আপনার কতটুকু ওজন কমাতে হবে তা নির্ধারণ করুন এবং ব্যাক্তিগতভাবে প্রাত্যহিক ক্যালিরর একটি মাত্রা ঠিক করুন স্বাস্থ্যকর উপায়ে ওজন হ্রাসের জন্য একটি স্বাস্থ্যকর ব্যায়াম পদ্ধতি অনুসরণ করুন এবং স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলুন ৬৭ মাসের পরিকল্পনা তৈরী করুন নিয়মিত খেলাধুলা ও বায়াম করুন জিমে গিয়ে freehand cardio weighttraining করুন এতে মেটাবলিজম ক্ষুধা ও রুচি বারবে প্রচুর পানি পান করুন একবারে বেশি না খেয়ে ঘন ঘন অল্প করে খান খাদ্যে এই উপাদান গুলো যুক্ত করুন (১) আমিষঃ মাংস মাছ ডিম দুধ এবং বিভিন্ন দুগ্ধজাত পণ্য সিমের বিচি বা ডালজাতীয় খবার এবং সয়া মিট (soya meat) (২) শ্বেতসার – আলু ভাত নুডলস পাস্তা রুটি কলা মধু (৩) চর্বি – সবধরনের তেল মাখন ননী ঘী বাদাম (৪) বিভিন্ন ধরনের শাকসব্জি ও ফলমূল ওজন স্বাভাবিকের চাইতে কম হওয়াটা আপনার জন্য ভাল নয় এটি বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য একটি দুঃসংবাদ এর ফলাফলগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ (১) শক্তিহীন হয়ে পড়া – ওজন কম হলে আপনি সবসময় ক্লান্ত বোধ করবেন কোন কাজে মনোযোগ বসে না (২) পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়া – ওজন কম হলে সম্ভবত আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব রয়েছে(৩) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়া – ওজন কম হলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পূর্ণ কাজ করে না তাই সর্দিকাশি জ্বর বা কোন ধরনের সংক্রমণে আপনি সহজেই আক্রান্ত হয়ে পড়েন ওজন স্বাভাবিকের চাইতে কম হওয়াটা আপনার জন্য ভাল নয় এটি বর্তমানে এবং ভবিষ্যতে আপনার স্বাস্থ্যের জন্য একটি দুঃসংবাদ এর ফলাফলগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ(১) শক্তিহীন হয়ে পড়া – ওজন কম হলে আপনি সবসময় ক্লান্ত বোধ করবেন পরীক্ষার পড়া রিভাইজ দিতে গেলে খেলতে গেলে বা সঙ্গীদের সাথে বেড়াতে গেলে এটা খুব একটা সাহায্য করে না (২) পুষ্টির ঘাটতি দেখা দেয়া – ওজন কম হলে সম্ভবত আপনার শরীরে প্রয়োজনীয় পুষ্টির অভাব রয়েছে অল্প বয়সী মেয়েদের জন্য ক্যালসিয়াম বিশেষ গুরুত্বপূর্ণ কারন এটি মজবুত ও সুস্থ হাড় গঠনে সহায়তা করে আপনি যথেষ্ট পরিমাণে ক্যালসিয়াম না পেলে ভবিষ্যতে আপনার অস্টিওপোরসিস (একধরনের হাড়ের অসুখ) হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় সুস্বাস্থ্যের জন্য আয়রনও জরুরী আপানার মাসিক শুরু হলে ঋতুস্রাবের সাথে অনেক আয়রন শরীর থেকে বের হয়ে যাবে অন্যান্য ধরনের পুষ্টির ঘাটতির কারনে আপানার ত্বক ও চুল স্বাস্থ্যহীন হয়ে পড়তে পারে (৩) রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যাওয়া – ওজন কম হলে আপনার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সম্পূর্ণ কাজ করে না তাই সর্দিকাশি জ্বর বা কোন ধরনের সংক্রমণে আপনি সহজেই আক্রান্ত হয়ে পড়েন (৪) মাসিক দেরিতে হওয়া বা বিঘ্নিত হওয়া– ওজন কম হওয়ার কারনে তা থেকে আপনার হরমোনের সমস্যা তৈরি হলে এমনটি হতে পারে (৫) ভবিষ্যতে বাচ্চা নিতে গেলে সমস্যা হওয়া – ওজন কম হওয়ার কারনে আপনার মাসিক বন্ধ হয়ে গেলে পরে বাচ্চা নেয়ার সময় আপনার সমস্যা হতে পারে (১) শাকঃ চিকিৎসকদের মতে যেসব খাবার পেটের চর্বি কমায় তার মধ্যে শাকসবজি অন্যতম সকালে কিংবা দুপুরে শাকসবজি খান অনেকের ক্ষেত্রে এই খাবার হজমে সমস্যা করে সেক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে পরিমান বুঝে শাকসবজি খান (২) ঝালঃ অনেকেই ঝাল খাননা কিন্তু পেট কমাতে ঝালের ভূমিকা জানলে প্রতিদিন কমপক্ষে একটি ঝাল খাবেন ঝাল ক্যালরি পুড়িয়ে দিতে সাহায্য করে এছাড়াও শরীরে জমে থাকা চর্বি অক্সিডাইস করে ফলে চর্বি জমে থাকতে পারে না প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন সিথাকায় তার শরীরের জন্য উপকার করে (৩) ফুলকপিঃ এতে প্রচুর ফাইবার বিভিন্ন খনিজ লবণ ও ভিটামিন তো আছেই সঙ্গে রয়েছে ফটোকেমিক্যাল আর এ কারণে শরীরের চর্বি জমতে দেয় না তাই ফুলকপিতে ভরসা রেখে কমিয়ে ফেলুন ভুঁড়ি তাই দেরি না করে শীতে বেশি বেশি ফুলকপি খান (৪) গাজরঃ কম ক্যালরির খাবার এর মধ্য গাজর থাকবে প্রথম সারিতে গাজরের রস নিয়ম মেনে খেতে পারলে আপনার পেট অবশ্যই কমবে ওজন নিয়ন্ত্রণে রেখে চেহারাকে অনেক তাড়াতাড়ি সুন্দর ও উজ্জ্বল করতে পারে (৫) মাশরুমঃ আপনি কি মাশরুম পছন্দ করেন তাহলে ভুড়ি কমানোর ওষুধ আপনার হাতের মুঠোয় মাশরুম রক্তে চিনির পরিমাণ নিয়ন্ত্রণে রাখে এছাড়া এটি প্রোটিনের ভরপর শরীরের মেটাবলিজম বাড়িয়ে চর্বি জমা রোধ করতে পারে সহজেই(৬) কুমড়োঃ বেশি ফাইবার আর কম ক্যালরির খাবার হল কুমড়ো পেটের মেদ কমাতে বিশেষজ্ঞরা উপদেশ দিয়ে নিয়মিত কুমড়ো খেতে এছাড়া কুমড়োর অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো এটি ক্যান্সার প্রতিরোধক আর এজন্য নিয়মিত খাবার তালিকায় রাখুন(৭) শসাঃপুরোটাই ফাইবার আর পানিতে সমৃদ্ধ আর ফাইবার অধিক পরিমাণে থাকার কারণে খিদেও কমায় শরীরে ফ্যাট কমাতে খাবারের তালিকায় নিয়মিত শসা রাখুন শক্ত হয়ে থাকা অবস্থায় পুরুষাঙ্গে অত্যন্ত জোরে মোচড় দিলে তা ভেঙে যেতে পারে ছেলেদের লিঙ্গে কোন হাড় থাকে না তবে যেসব নলের মত জায়গায় রক্ত জমা হয়ে পুরুষাঙ্গটি শক্ত হয়ে ওঠে সেগুলো ফেটে যেতে পারে তখন সেগুলো থেকে রক্ত বেরিয়ে পুরুষাঙ্গে চলে আসে এবং সেটি ফুলে যায় ও তীব্রভাবে ব্যাথা করে এ ধরনের ঘটনার একতৃতীয়াংশ ঘটে পুরুষেরা যৌনক্রিয়ার সময় নিচে থাকলে সাধারণত সঙ্গিনীর দেহ থেকে পুরুষাঙ্গটি পিছলে বেরিয়ে আসলে এবং তারপর জোরে চাপ খেলে সেটি ভেঙে যাওয়ার মত ঘটনা ঘটে রাতে ঘুমানোর সময় একজন সাধারন পুরুষ মানুষের পুরুষাঙ্গ গড়ে তিন থেকে পাঁচ বার সুদৃঢ় হয়ে উঠতে পারে এবং প্রতিবার সেটি ২৫৩৫ মিনিট সুদৃঢ় হয়ে থাকে ছেলেদের ক্ষেত্রে সকালে উত্তেজিত পুরুষাঙ্গ নিয়ে ঘুম ভাঙ্গাটা সাধারন একটি বিষয় রাত্রে পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে ওঠার নির্দিষ্ট কারন জানা যায় না গবেষণায় দেখা গেছে যে স্বপ্ন দেখার সাথে এর সম্পর্ক থাকতে পারে কারণ যাই হোক বেশিরভাগ ডাক্তারই একমত যে রাতে পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে ওঠা হচ্ছে সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে চলার লক্ষন রাতে ঘুমানোর সময় একজন সাধারন পুরুষ মানুষের পুরুষাঙ্গ গড়ে তিন থেকে পাঁচ বার সুদৃঢ় হয়ে উঠতে পারে এবং প্রতিবার সেটি ২৫৩৫ মিনিট সুদৃঢ় হয়ে থাকে ছেলেদের ক্ষেত্রে সকালে উত্তেজিত পুরুষাঙ্গ নিয়ে ঘুম ভাঙ্গাটা সাধারন একটি বিষয় রাত্রে পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে ওঠার নির্দিষ্ট কারন জানা যায় না গবেষণায় দেখা গেছে যে স্বপ্ন দেখার সাথে এর সম্পর্ক থাকতে পারে কারণ যাই হোক বেশিরভাগ ডাক্তারই একমত যে রাতে পুরুষাঙ্গ শক্ত হয়ে ওঠা হচ্ছে সবকিছু স্বাভাবিক ভাবে চলার লক্ষন আপনার লিঙ্গের আকার আপনার জুতোর মাপের সমানুপাতিক এই ধারনাটি একটি মিথ গবেষণায় পায়ের মাপের সাথে পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্যের কোন সম্পর্ক পাওয়া যায়নি ছোট আকারের পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্য উত্তেজিত অবস্থায় অনেক বেশি বেশি বেড়ে যায় ২৭৭০ জন পুরুষের লিঙ্গের আকারের উপর গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে ছোট আকারের পুরুষাঙ্গ উত্তেজিত অবস্থায় ৮৬ পর্যন্ত বৃদ্ধি পায় যা বড় আকারের পুরুষাঙ্গের আকার বৃদ্ধির তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ (বড় আকারের পুরুষাঙ্গ উত্তেজিত অবস্থায় ৪৭ বাড়ে) গবেষণায় আরও দেখা গেছে উত্তেজিত অবস্থায় দুজন পুরুষের লিঙ্গের দৈর্ঘ্যের পার্থক্য অনুত্তেজিত অবস্থায় তাদের দৈর্ঘ্যের পার্থক্যের চাইতে কম হয় অতএব দেখা যাচ্ছে যে উত্তেজিত অবস্থায় যদি পুরুষাঙ্গের দৈর্ঘ্যের মধ্যে খুব একটা পার্থক্য না থাকে তার মানে হচ্ছে অনুত্তেজিত অবস্থায় যেগুলোর আকার ছোট সেগুলো উত্তেজিত অবস্থায় অনেক বেশি বৃদ্ধি পাবে প্রচলিত ধারনা মতে এটিকে মাংসপেশি মনে করা হলেও পুরুষাঙ্গ কোন পেশি নয় একারণে উত্তেজিত অবস্থায় আপনি এটিকে বিশেষ নাড়াতে পারেন না পুরুষাঙ্গে একধরনের স্পঞ্জের মত টিস্যু দিয়ে তৈরি যা পুরুষেরা যৌন উত্তেজনা অনুভব করলে রক্ত দিয়ে ভর্তি হয়ে যায় দুটি সিলিন্ডার আকৃতির প্রকোষ্ঠের ভেতর রক্ত এসে জমা হয় যাতে পুরুষাঙ্গটি ফুলে ওঠে ও শক্ত হয়ে যায় ফুলে ওঠার কারণে সাধারণ অবস্থায় যে সব শিরার মাধ্যমে রক্ত পুরুষাঙ্গ থেকে বেরিয়ে যায় সেগুলো বন্ধ হয়ে যায় উত্তেজনা চলে গেলে প্রকোষ্ঠ দুটির ধমনিগুলো আবার সরু হয়ে যায় এবং পুরুষাঙ্গ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসতে পারে প্রচলিত ধারনা মতে এটিকে মাংসপেশি মনে করা হলেও পুরুষাঙ্গ কোন পেশি নয় একারণে উত্তেজিত অবস্থায় আপনি এটিকে বিশেষ নাড়াতে পারেন না পুরুষাঙ্গে একধরনের স্পঞ্জের মত টিস্যু দিয়ে তৈরি যা পুরুষেরা যৌন উত্তেজনা অনুভব করলে রক্ত দিয়ে ভর্তি হয়ে যায় দুটি সিলিন্ডার আকৃতির প্রকোষ্ঠের ভেতর রক্ত এসে জমা হয় যাতে পুরুষাঙ্গটি ফুলে ওঠে ও শক্ত হয়ে যায় ফুলে ওঠার কারণে সাধারণ অবস্থায় যে সব শিরার মাধ্যমে রক্ত পুরুষাঙ্গ থেকে বেরিয়ে যায় সেগুলো বন্ধ হয়ে যায় উত্তেজনা চলে গেলে প্রকোষ্ঠ দুটির ধমনিগুলো আবার সরু হয়ে যায় এবং পুরুষাঙ্গ থেকে রক্ত বেরিয়ে আসতে পারে অনেক মানুষ বিশ্বাস করেন যে বীর্যপাতের সময় মুত্রত্যাগ করা সম্ভব এটি সত্যি নয় আপনার ব্লাডার বা মূত্রাশয় ভর্তি থাকলেও বীর্যপাতের সময় কেবল বীর্যই বেরিয়ে আসবে তবে যৌনক্রিয়ার সময় ব্লাডার খালি থাকাই বাঞ্ছনীয় কিশোরদের জন্য এর কোন গড় দৈর্ঘ্য নেই কারণ একেক জন একেক গতিতে বেড়ে ওঠে পূর্ণ বয়স্কদের ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গের গড় আকৃতি ১৪১৬ সেমি (৫৫৬৩ ইঞ্চি) একটি সুদৃঢ় পুরুষাঙ্গের ঘের হয় ১২১৩ সেমি (৪৭৫১ ইঞ্চি) কিশোরদের জন্য এর কোন গড় দৈর্ঘ্য নেই কারণ একেক জন একেক গতিতে বেড়ে ওঠে পূর্ণ বয়স্কদের ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গের গড় আকৃতি ১৪১৬ সেমি (৫৫৬৩ ইঞ্চি) একটি সুদৃঢ় পুরুষাঙ্গের ঘের হয় ১২১৩ সেমি (৪৭৫১ ইঞ্চি) একটি পুরুষাঙ্গকে অস্বাভাবিক ছোট মনে করা হয় যদি সুদৃঢ় অবস্থায় এটির দৈর্ঘ্য ৩ ইঞ্চি (৭৬ সেমি)এর কম হয় সুদৃঢ় অবস্থায় পুরুষাঙ্গ বিভিন্ন কোনে থাকতে পারে কোন উত্তেজিত পুরুষাঙ্গ একদম সোজা উপরের দিকে তাক হয়ে থাকে কোনটি একেবারে নিচের দিকে কোন কোনটি সামান্য ডানে বা বামে বেঁকে থাকতে পারে সঠিক ভঙ্গি বলতে কিছু নেই যদি আপনার পুরুষাঙ্গ বেশি রকমের বেঁকে থাকে এবং এতে সঙ্গমের সময় আপনার অসুবিধা হয় তাহলে ডাক্তারের কাছে যান কিছু কিছু ক্ষেত্রে এটি পিরোনিস ডিজিজ (Peyronies disease)এর লক্ষন পিউবার্টি বা বয়ঃসন্ধির সময় (১১ থেকে ১৮ বছরের ভেতর) পুরুষাঙ্গ অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পায় তবে এটি ২১ বছর বয়স পর্যন্ত বড় হতে থাকে পিউবার্টি বা বয়ঃসন্ধির সময় (১১ থেকে ১৮ বছরের ভেতর) পুরুষাঙ্গ অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পায় তবে এটি ২১ বছর বয়স পর্যন্ত বড় হতে থাকে পিউবার্টি বা বয়ঃসন্ধির সময় (১১ থেকে ১৮ বছরের ভেতর) পুরুষাঙ্গ অনেক দ্রুত বৃদ্ধি পায় তবে এটি ২১ বছর বয়স পর্যন্ত বড় হতে থাকে পুরুষাঙ্গ নিয়ে উদ্বিগ্ন এমন পুরুষদেরকে কাউন্সেলিং এবং শিক্ষা দিলে উপকার পাওয়ার প্রমান পাওয়া গেছে থেরাপি দিলে রোগীরা তাদের পুরুষাঙ্গ নিয়ে যেকোনো ভ্রান্ত ধারনা সনাক্ত করতে ও শুধরে নিতে পারেন এবং আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়ে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাদের ভয় কাটিয়ে উঠতে পারেন অনেক ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীই দাবি করে যে তাদের সেবাগুলো নিলে পুরুষাঙ্গের আকার বৃদ্ধি পায় কিন্তু এর স্বপক্ষে খুব সামান্য প্রমান পাওয়া যায় এই সব টিভি বিজ্ঞাপন যেগুলোতে বিভিন্ন হারবাল ও হোমিওপ্যাথিক ক্লিনিকে বিকলাঙ্গ পুরুষাঙ্গ ঠিক করার ও যৌনশক্তি বৃদ্ধি করার ওষুধ মলম মালিশ ইত্যাদি বিক্রির কথা বলা হয় এড়িয়ে চলুন এগুলোতে কাজ হলে কোন বিজ্ঞাপন দেয়ার দরকার হত না পুরুষাঙ্গ নিয়ে উদ্বিগ্ন এমন পুরুষদেরকে কাউন্সেলিং এবং শিক্ষা দিলে উপকার পাওয়ার প্রমান পাওয়া গেছে থেরাপি দিলে রোগীরা তাদের পুরুষাঙ্গ নিয়ে যেকোনো ভ্রান্ত ধারনা সনাক্ত করতে ও শুধরে নিতে পারেন এবং আত্মবিশ্বাস বাড়িয়ে নিয়ে যৌন সম্পর্কের ক্ষেত্রে তাদের ভয় কাটিয়ে উঠতে পারেন অনেক ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীই দাবি করে যে তাদের সেবাগুলো নিলে পুরুষাঙ্গের আকার বৃদ্ধি পায় কিন্তু এর স্বপক্ষে খুব সামান্য প্রমান পাওয়া যায় এই সব টিভি বিজ্ঞাপন যেগুলোতে বিভিন্ন হারবাল ও হোমিওপ্যাথিক ক্লিনিকে বিকলাঙ্গ পুরুষাঙ্গ ঠিক করার ও যৌনশক্তি বৃদ্ধি করার ওষুধ মলম মালিশ ইত্যাদি বিক্রির কথা বলা হয় এড়িয়ে চলুন এগুলোতে কাজ হলে কোন বিজ্ঞাপন দেয়ার দরকার হত না যোনিপথ অনেকটা মোজার মতো মোজা যখন পায়ে পরিধান করা হয় তখন মোজা পায়ের আকার ধারণ করে পুরুষাঙ্গ এবং যোনি একই রকম কাজ করে থাকে পুরুষাঙ্গের গোঁড়ার মতো জনির চারপাশ সংবেদনশীল যোনি পিচ্ছিল হতে কিছুটা সময় লাগে তাই যোনিপথে পুরুষাঙ্গ প্রবেশের পূর্বে কোনরূপ তাড়াহুড়া করা যাবে না শুরুতে সঙ্গীর সাথে রোমান্টিক কথাবার্তা বলে কিছুটা সময় পর করতে হবে টিনেজারদের জন্য এর কোন গড় দৈর্ঘ্য নেই কারণ একেক জন একেক গতিতে বেড়ে ওঠে পূর্ণ বয়স্কদের ক্ষেত্রে পুরুষাঙ্গের গড় আকৃতি ১৪১৬ সেমি (৫৫৬৩ ইঞ্চি) একটি সুদৃঢ় পুরুষাঙ্গের ঘের হয় ১২১৩ সেমি (৪৭৫১ ইঞ্চি) এটা তেমন কোন বড় সমস্যা না চিন্তার প্রয়োজন নেই বৃদ্ধ বয়সে হরমোন নিঃসরণ কমে যাওয়ার কারনে এমন হয় তবে যুবক ও মধ্যবয়সীদেরও অনেক অনিয়মের কারনে এমন হতে পারে পুরুষাঙ্গে কিছুদিন মধু মালিশ করুণ ডাক্তারের পরামর্ষ নিয়ে যৌন উত্তেজক ঔষধ সেবন করতে পারেন পুরুষাঙ্গে ভালভাবে রক্ত সঞ্চালনের জন্য নিয়মিত ব্যায়াম করুণ কিছুদিন মধু মালিশ করুণ ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে যৌন উত্তেজক ঔষধ সেবন করতে পারেন অনেক সময় শরীর চড়া হলে এমন হয় বেশি বেশি পানি ও শরবত পান করুন আবার কখনো পুরুষাঙ্গে ক্ষত বা ঘা থেকে এমন হয় যা গনোরিয়ার মত যৌনরোগের পূর্বাভাস সেক্ষেত্রে দেরি না করে ডাক্তারের চিকিৎসা গ্রহন করুন একটি ছেলের যদি যৌন মিলন করার সময় ১০মিনিটের মাথায় বীর্যপাত হয়সেটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একে দ্রুত বীর্যপাত বলা যাবে না এমনকি ৬৭ মিনিট ও স্বাভাবিক বলা হয় আপনি তখনি আপনার এ বিষয় টি নিয়ে চিন্তা করবেন যখন আপনার তার থেকেও কম অর্থাৎ ১৫ মিনিটে বের হয়ে যাবে কেবল তখনি আপনি বলতে পারবেন যে আপনারএ সমস্যা অর্থাৎ বীর্য দ্রুত বের হয়ে যাচ্ছে একটি ছেলের যদি যৌন মিলন করার সময় ১০মিনিটের মাথায় বীর্যপাত হয়সেটি সম্পূর্ণ স্বাভাবিক একে দ্রুত বীর্যপাত বলা যাবে না এমনকি ৬৭ মিনিট ও স্বাভাবিক বলা হয় আপনি তখনি আপনার এ বিষয় টি নিয়ে চিন্তা করবেন যখন আপনার তার থেকেও কম অর্থাৎ ১৫ মিনিটে বের হয়ে যাবে কেবলতখনি আপনি বলতে পারবেন যে আপনারএ সমস্যা অর্থাৎ বীর্য দ্রুত বের হয়ে যাচ্ছে যৌন মিলনের সময় আপনার যদি তাড়াতাড়ি বীর্যপাত হয়ে যায় তাহলে এই সমস্যা টা কে বলা হয় premature ejaculation জীবনধারার কিছু পরিবর্তনের মাধ্যমে আপনি উপকৃত হতে পারেন যেমন নিয়মিত ব্যায়াম করা পর্যাপ্ত পরিমানে ঘুম ও বিশ্রাম নেয়া নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য খাওয়া সেক্স করার আগে বেশি করে foreplay করা আপনার ধূমপান বা মাদকদ্রব্য গ্রহণের অভ্যাস থাকলে তা পরিহার করুন আপনি relaxation technique চেষ্টা করে দেখতে পারেন যৌন মিলনের সময় মনকে একটু distract করার চেষ্টা করে দেখতে পারেন দুশ্চিন্তা বা অবসাদ এ ভুগলেও এমন টা হতে পারেকোন কিছু নিয়ে বেশি দুশ্চিন্তা করবেন না গ্রাহকসেক্স এর সময় nervousness এর কারণে বীর্যপাত আগে আগে হয়ে যেতে পারেতাই এই বিষয়ে আপনার পার্টনার এর সাথে খোলাখুলি কথা বলে নিবেন সেক্স করার সময় যদি মানসিক ভাবে আপনারা একে অপরের কাছাকাছি আসতে পারেন তাহলে এই সমস্যা গুলো আর হবেনা সেক্স এর সময় কনডম ব্যবহার করলেও এই সমস্যাটি হবেনা এতেও কাজ না হলে আপনি একজন Urology specialist এর কাছে যেতে পারেন অনেক কারনেই বীর্য পাতলা হয় ঘন ঘন হস্তমৈথুন করলে বা স্বপ্নদোষ হলে বীর্য ঘন হওয়ার সময় পায় না ফলে বীর্য পাতলা হয় হস্তমৈথুন পর্ণগ্রাফি অশ্লীল চিন্তাভাবনা থেকে বিরত থাকুন পুষ্টিকর খাবার খান শরীরের ঘাটতি স্বাভাবিকভাবেই পূরণ হয় বীর্যের ঘনত্তের ওপর সন্তান জন্মদান নিরভর করে না বীর্যে শতকরা ২০ ভাগ শুক্রানু জীবন্ত থাকলেই বাচ্চা জন্ম দেয়া সম্ভব নতুন সঙ্গীর সাথে অতি উত্তেজিত হয়ে পড়ার কারনে অথবা স্থানীয় স্নায়ুতন্ত্র (local nervous system) তীব্র সংবেদনশীলতার কারনে এটি হতে পারে এটি যৌন সক্ষমতা নিয়ে দুশ্চিন্তা স্ট্রেস দুজনের সম্পর্কের অমীমাংসিত কোন বিষয় বা বিষণ্ণতা (depression) থেকেও হতে পারে অনেক পুরুষ এবং তাদের সঙ্গিনীরা এটি নিয়ে বিশেষ চিন্তিত নয় বীর্যপাত হয়ে যাওয়ার একটু পরে আবার যৌনক্রিয়া আরম্ভ করুন যত তাড়াতাড়ি আবার দ্বিতীয়বার যৌন ক্রিয়া শুরু করবেন তত দেরিতে অর্গাজম হবে বয়স্ক মানুষদের জন্য এটি কঠিন হতে পারে দ্বিতীয়বার যৌনাঙ্গ সুদৃঢ় হতে অনেক সময় লাগতে পারে দোকানে এক ধরনের ক্রিম পাওয়া যায় যা মাখলে পুরুষাঙ্গ অনুভূতিহীন হয়ে পড়ে তবে এটির প্রভাবে আপনার সঙ্গিনীও অনুভূতিহীন হয়ে পড়তে পারেন যা তারা অনেক সময় পছন্দ করেন না অনেকে কনডম ব্যবহার করেও উপকার পান সিলেক্টিভ সেরোটোনিন রিয়াপটেক ইনহিবিটর (selective serotonin reuptake inhibitors (SSRIs)) নামক একধরনের বিষণ্ণতা দূর করার ওষুধ (Antidepressants) বীর্যপাত প্রক্রিয়াটি ধীর গতির করে দিতে পারে তবে এটি এক বছরের বেশি কাজ করে না ওষুধ খাওয়া শুরু করার আগে অন্য সবগুলো উপায়ে চেষ্টা করে দেখুন সাইকোথেরাপির মাধ্যমে দুজনের সম্পর্কের সমস্যাগুলো খুজে বের করতে বা দূর করতে পারেন (১) অনেক ডাক্তার মনে করেন প্রথম দিকের কিছু যৌন অভিজ্ঞতার কারনে পরবর্তী কালে সমস্যা হতে পারে যেমন কোন কিশোর যদি ধরা পড়ার ভয়ে দ্রুত বীর্যপাত ঘটাতে অভ্যস্ত হয়ে যায় তাহলে পরবর্তী কালে এই অভ্যেস থেকে বেরিয়ে আসাটা কঠিন হতে পারেকম বয়সে কোন বেদনাদায়ক যৌন অভিজ্ঞতার স্মৃতি থাকলে সারা জীবন তার প্রভাবে যৌন বিষয়ক উদ্বেগ এবং দ্রুত বীর্যপাত হতে পারে এই অভিজ্ঞতাগুলো হস্তমৈথুনের সময় ধরা পড়া থেকে শুরু করে যৌন নিগ্রহের শিকার হওয়া পর্যন্ত বিভিন্ন রকমের হতে পারে (২) সাধারন শারীরিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ ডায়াবেটিসপ্রোস্টেটের অসুখ উচ্চ রক্তচাপ থায়রয়েডের সমস্যামাদক সেবন অতিরিক্ত মদ্যপান (৩) সাধারন মানসিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ বিষণ্ণতা (depression) মানসিক চাপ (stress) যৌন বা আবেগের সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোন অমীমাংসিত বিষয় যৌন সক্ষমতার বিষয়ে উদ্বেগ (এটি কোন নতুন সম্পর্ক শুরুর সময় বা আগে কোন যৌন সমস্যা হয়ে থাকলে বেশি দেখা যায়) (১) দ্রুত বীর্যপাত (২) দেরিতে বীর্যপাত (৩) উল্টো দিকে বীর্যপাত হয়ত কোন ওষুধ বা স্নায়ুবিক সমস্যার কারনে আপনার বীর্য উৎপাদন বন্ধ হয়ে গেছে চিন্তার কোন কারন নেই দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিন গনোরিয়া আছে এমন কারো সঙ্গে যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে গনোরিয়া হতে পারে৷ এই রোগে আক্রান্ত মা থেকে নবজাতকের শরীরে এই জীবাণু প্রবেশ করতে পারে৷ পুরুষ ও নারী বিশেষ করে ১৫ থেকে ২৪ বছর বয়সিরা গনোরিয়ায় বেশি আক্রান্ত হয় গনোরিয়া সংক্রমনের পর লক্ষণ প্রকাশ পেতে প্রায় ১ থেকে ১৪ দিন পর্যন্ত সময় লাগে মেয়েদের ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ দেখা যায় সেগুলো হলোঃ তলপেটে ব্যথা জ্বর যোনিস্রাব ইত্যাদি তবে অনেকক্ষেত্রে সংক্রমণ হলেও কোন প্রকার লক্ষণ দেখা যায় না ছেলেদের ক্ষেত্রে যেসব লক্ষণ দেখা যায় সেগুলো হলোঃ মুত্রত্যাগের সময় জ্বালাপোড়া করা এবং লিঙ্গ থেকে স্রাব বের হওয়া মহিলাদের গনোরিয়ার সম্ভাব্য পরিণতি হল ডিম্বনালী বদ্ধ হয়ে যাওয়া ফলে ডিম্বাণুগুলো জরায়ুতে পৌছাতে পারে না এবং বন্ধ্যাত্ব দেখা যায় গনোরিয়ায় আক্রান্ত মহিলাদের অনাগত বাচ্চারা অনেক সময় অন্ধ হয়ে যেতে পারে পুরুষদের ক্ষেত্রে গনোরিয়া কখনও কখনও প্রস্রাবের নালীটি বন্ধ করে দেয় সিফিলিস আক্রান্ত রোগীর রক্ত বীর্য হতে ছড়ায় গনোরিয়ার মতো সিফিলিসের জীবাণুও মা থেকে নবজাতকের দেহে ঢুকতে পারে ৷ চিকিৎসা না করলে সিফিলিস থেকে দীর্ঘমেয়াদে জটিল সমস্যা দেখা দিতে পারে ৷ প্রাথমিক পর্যায়ে যন্ত্রণা ও চুলকানিবিহীন ক্ষত হতে পারে দ্বিতীয় পর্যায়ে মুখ যোনি কিংবা মলদ্বারে ব়্যাশ বা ক্ষত হতে পারে৷ সিফিলিস এ আক্রান্ত হলে মহিলাদের ক্ষেত্রে মলদ্বার এবং যোনীর আশেপাশের অংশে ঘা ও ফুসকুড়ি দেখা যায় পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রায়শই পুরুষাঙ্গের ডগায়সম্পূর্ণ পুরুষাঙ্গ জুড়ে অথবা মলদ্বার এর আশেপাশে ঘা দেখা যায় সিফিলিসের সম্ভাব্য পরিণতি হল হার্টের সমস্যা ভুলে যাওয়ার প্রবণতা এবং প্রতিবন্ধী শিশুদের জন্ম দেওয়া শেষ পর্যায়ে প্যারালিসিস থেকে অন্ধত্ব এমনকি মৃত্যুও হতে পারে৷ যৌনকাজে সক্রিয় যে কেউ এই রোগে আক্রান্ত হতে পারে ৷ আক্রান্তদের অনেকের শরীরে এই রোগের লক্ষণ দেখা যায় না ৷ অর্থাৎ কারও শরীরে এই রোগের লক্ষণ না থাকলেও তিনি সঙ্গীর দেহে এটি ছড়িয়ে দিতে পারেন৷ লক্ষণগুলো হলো – যৌনাঙ্গ মলদ্বার ও মুখে একটি বা দুটি ফোস্কা পড়তে পারে৷ সেগুলো ভেঙে গিয়ে ব্যথা হতে পারে৷ সেই ব্যথা সারতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগতে পারে৷ যাদের সিফিলিস গনোরিয়া ও হার্পিস আছে তাদের ভবিষ্যতে এইচআইভি আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে ৷ কারণ রোগগুলো একইরকম যৌন আচরণের জন্য হয়ে থাকে ৷ এইচআইভিতে আক্রান্ত হওয়ার অন্যতম দুটি কারণ কনডম ছাড়া যৌনমিলন এবং একাধিক ও অপরিচিত কারও সঙ্গে মিলন ৷ তবে এইচআইভিতে আক্রান্ত কোনো ব্যক্তি বা কোনো এইডস রোগীর রক্ত আপনার শরীরে ঢুকলেও এই রোগ হয় ৷ ক্লেমিডিয়া রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সাথে যদি কোন সুস্থ ব্যক্তি যৌন মিলন করে তবে সেই ক্লেমিডিয়া রোগ সংক্রমিত হতে পারে সাধারণত জননাঙ্গে বা দেহের কোন স্থানে যদি কোন কাটা বা ক্ষত থাকে তবে সেই পথে খুব সহজে ভাইরাস সংক্রমন ঘটাতে পারে সেজন্য যৌন মিলনের সময় অবশ্যই সুরক্ষা হিসেবে কনডম ব্যবহার করা উচিত পুরুষ ও নারীর উভয়েরই এটি হতে পারে ৷ নারীর গর্ভধারণ ক্ষমতায় স্থায়ী সমস্যা তৈরি করতে পারে ক্লেমিডিয়া ৷ এই রোগের একবার চিকিৎসা হলেও পরবর্তীতে আবারও এটি হতে পারে ৷ এমনটি হলো নারীদের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক অথবা অনিয়মিত ঋতুস্রাব মূত্র ত্যাগের সময় জ্বলাপোড়া হতে পারে৷ পুরুষের বেলাতেও প্রায় একই ধরণের লক্ষণ দেখা দেয় ৷ পুরুষের ক্ষেত্রে সাধারণত দেখা যায় প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া এবং বার বার প্রস্রাব করার তাগিদ অনুভব করে তবে নারীদের ক্ষেত্রে এই রোগের লক্ষণগুলো সহজে বোধগম্য হয়ে ওঠে না তবে নারীদের ক্ষেত্রে অস্বাভাবিক অথবা অনিয়মিত ঋতুস্রাব মূত্র ত্যাগের সময় জ্বলাপোড়া হতে পারে৷ নারীদের ক্লেমিডিয়া সম্ভাব্য পরিণতি হল ডিম্বনালী বদ্ধ হয়ে যাওয়া ফলে ডিম্বাণুগুলো জরায়ুতে পৌছাতে পারে না এবং বন্ধ্যাত্ব দেখা যায় পুরুষদের ক্ষেত্রে ক্লেমিডিয়া কখনও কখনও প্রস্রাবের নালীটি বন্ধ করে দেয় মাঝে মাঝে বন্ধ্যাত্বও দেখা যায় ক্যান্ডিডিয়াসিস রোগে আক্রান্ত হলে মহিলাদের বিভিন্ন লক্ষণ দেখা যায় যেমন দুর্গন্ধযুক্ত হলুদ বর্ণের যোনীস্রাব যৌনাঙ্গের আশেপাশে ছোট চুলকানিযুক্ত ঘা পুরুষদের ক্ষেত্রে দেখা যায় চুলকানিযুক্ত যৌনাঙ্গ প্রস্রাবের সময় জ্বালাপোড়া ইত্যাদি ক্যানডিডিয়াসিসে ভুগলে যৌন মিলন খুব বেদনাদায়ক হতে পারে অনেকেই হয়তো জানেন না এই রোগটিও যৌন সংসর্গের ফলে ছড়ায় একই ভাবে ছড়াতে পারে হেপাটাইটিস এ এবং হেপাটাইটিস সি তবে তার সংখ্যা খুবই কম লিভার সংক্রান্ত জটিলতা মূত্রের রং পরিবর্তন গা বমি ভাব ইত্যাদি এই রোগের লক্ষণ হতে পারে যৌনাঙ্গ এবং পায়ুর আশেপাশে আঁচিলের মতো র্যাশ এক ধরনের যৌন রোগ একত্রে একসঙ্গে অনেকগুলি আঁচিল দেখা যায় হিউম্যান প্যাপিলোমাভাইরাস যা সার্ভিক্যাল ক্যানসারের কারণ এবং যৌন সংসর্গে এক শরীর থেকে অন্য শরীরে ছড়ায় তাই এই রোগের জন্ম দেয় অনেক সময় এই আঁচিলগুলি ফোস্কার মতো হয় আবার অনেক সময় এগুলি আলসারেও পরিণত হতে পারে যৌনাঙ্গ থেকে অস্বাভাবিক ক্ষরণ যৌনক্রিয়ার সময় যৌনাঙ্গে যন্ত্রণা এবং মূত্রত্যাগের সময় যন্ত্রণা এই রোগের লক্ষণ যদিও সঠিক চিকিৎসায় দ্রুত সেরে ওঠা সম্ভব মাথার চুলের মতো যৌনাঙ্গের কেশেও উকুন বাসা বাঁধতে পারে এবং শারীরিক মিলনের সময়ে তা অন্যের শরীরে সংক্রামিত হয় যৌনাঙ্গের আশপাশে চুলকানি হলে তা এই কারণে হতে পারে এইচআইভি এইচবিভি প্রভৃতি সংক্রমণের সংক্রমিত হওয়া সম্ভব এবং এসব সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশিত হতে বহু বছর সময় লেগে যায় ক্ল্যামিডিয়া আক্রান্ত হলে প্রায়ই উপসর্গ অপ্রকাশিত থাকে তবে চিকিৎসা গ্রহণ না করলে তা গর্ভধারণের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে কোনো সন্দেহ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার ব্যবস্থা করুন যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সাথে যদি কোন সুস্থ ব্যক্তি যৌন মিলন করে তবে সেই যৌনবাহিত রোগ সংক্রমিত হতে পারে সাধারণত জননাঙ্গে বা দেহের কোন স্থানে যদি কোন কাটা বা ক্ষত থাকে তবে সেই পথে খুব সহজে ভাইরাস সংক্রমন ঘটাতে পারে এক্ষেত্রে এইচআইভি এইচবিভি প্রভৃতি সংক্রমণের সংক্রমিত হওয়া সম্ভব এবং এসব সংক্রমণের লক্ষণ প্রকাশিত হতে বহু বছর সময় লেগে যায় ক্ল্যামিডিয়া আক্রান্ত হলে প্রায়ই উপসর্গ অপ্রকাশিত থাকে তবে চিকিৎসা গ্রহণ না করলে তা গর্ভধারণের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে কোনো সন্দেহ থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ নেওয়ার ব্যবস্থা করুন চিকিৎসা গ্রহণ না করা হয়ে থাকলে ক্ল্যামিডিয়া এবং গনোরিয়ার কারনে বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি হতে পারে যদিও এ সংক্রমণে আক্রান্ত অধিকাংশ ব্যক্তির মধ্যে কোনো স্থায়ী সমস্যা পরিলক্ষিত হয় না একবার শনাক্ত করা হয়ে গেলে ক্ল্যামিডিয়ার চিকিৎসা সহজেই প্রদান করা যায় কিন্তু সংক্রমণে আক্রান্তদের অধিকাংশের মধ্যে কোনো লক্ষণ প্রকাশিত হয় না এবং আক্রান্তরাও সংক্রমিত হওয়া সম্পর্কে অবগত থাকেন না আপনি যদি এ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন বলে মনে করেন তাহলে তা চেক আপ ও পরীক্ষা করান ক্ল্যামিডিয়ার পরীক্ষার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূত্র পরীক্ষা করানো হয় চিকিৎসা গ্রহণ না করা হয়ে থাকলে ক্ল্যামিডিয়া এবং গনোরিয়ার কারনে বন্ধ্যাত্ব সৃষ্টি হতে পারে যদিও এ সংক্রমণে আক্রান্ত অধিকাংশ ব্যক্তির মধ্যে কোনো স্থায়ী সমস্যা পরিলক্ষিত হয় না একবার শনাক্ত করা হয়ে গেলে ক্ল্যামিডিয়ার চিকিৎসা সহজেই প্রদান করা যায় কিন্তু সংক্রমণে আক্রান্তদের অধিকাংশের মধ্যে কোনো লক্ষণ প্রকাশিত হয় না এবং আক্রান্তরাও সংক্রমিত হওয়া সম্পর্কে অবগত থাকেন না আপনি যদি এ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন বলে মনে করেন তাহলে তা চেক আপ ও পরীক্ষা করান ক্ল্যামিডিয়ার পরীক্ষার জন্য বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূত্র পরীক্ষা করানো হয় এ প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত ছিলেন তার উপর অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ গ্রহণে কয়েক ধরনের সংক্রমণে সম্পূর্ণরূপে নিরাময় হয়ে যায় তবে কিছু কিছু সংক্রমণ চিকিৎসা গ্রহণের পরও আবার ফিরে আসে অথবা কোন উপসর্গের সৃষ্টি করে না আপনার যৌন ইতিহাস নিয়ে নতুন সঙ্গীঁর সাথে খোলামেলা আলোচনা করা সাধারণত ভালো এবং নিরাপদ শারীরিক মিলনের জন্য সবসময় কনডম ব্যবহার করুন যদি আপনি নিশ্চিত না হন তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন এ প্রশ্নের উত্তর নির্ভর করে আপনি কোন ধরনের সংক্রমণে আক্রান্ত ছিলেন তার উপর অ্যান্টিবায়োটিক ঔষধ গ্রহণে কয়েক ধরনের সংক্রমণে সম্পূর্ণরূপে নিরাময় হয়ে যায় তবে কিছু কিছু সংক্রমণ চিকিৎসা গ্রহণের পরও আবার ফিরে আসে অথবা কোন উপসর্গের সৃষ্টি করে না আপনার যৌন ইতিহাস নিয়ে নতুন সঙ্গীঁর সাথে খোলামেলা আলোচনা করা সাধারণত ভালো এবং নিরাপদ শারীরিক মিলনের জন্য সবসময় কনডম ব্যবহার করুন যদি আপনি নিশ্চিত না হন তাহলে ডাক্তারের সাথে কথা বলুন না আক্রান্ত না হয়ে কোনো রোগের জীবাণু বহন করা সম্ভব নয় তবে লক্ষণ দেখা না দিলেও যৌন সংক্রমণে আক্রান্ত হতে দেখা যায় তবে শারীরিক মিলনের মাধ্যমেই তা অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে না আক্রান্ত না হয়ে কোনো রোগের জীবাণু বহন করা সম্ভব নয় তবে লক্ষণ দেখা না দিলেও যৌন সংক্রমণে আক্রান্ত হতে দেখা যায় তবে শারীরিক মিলনের মাধ্যমেই তা অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে যদি আপনার সঙ্গী যৌনবাহিত সংক্রামক রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে লক্ষণ প্রকাশিত না হলেও চিকিৎসা গ্রহণ করা আপনার জন্য খুবই প্রয়োজন যদি আপনার সঙ্গীনি এ রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকেন তাহলে লক্ষণ প্রকাশিত না হলেও চিকিৎসা গ্রহণ করা আপনার জন্য খুবই প্রয়োজন কেননা ক্ল্যামিডিয়ায় আক্রান্তদের অধিকাংশের ক্ষেত্রে কোনো লক্ষণ দেখা যায় না যদি চিকিৎসা গ্রহণ না করেন তাহলে এ সংক্রমণ আপনার মাধ্যমে পুনরায় আপনার সঙ্গীঁনির কাছে চলে যাবে বিশেষ করে মহিলাদের ক্ষেত্রে ক্ল্যামিডিয়া অত্যন্ত জটিল একটি সমস্যা এবং চিকিৎসা গ্রহণ না করলে তা বন্ধ্যাত্বের সৃষ্টি করে যৌনকর্মে সক্রিয় হলে অবশ্যই চেকআপ করানো একটি ভালো চিন্তা হবে অধিকাংশ সংক্রমণের কোনো উপসর্গ প্রকাশিত হয় না এবং চেকআপ করানোর মাধ্যমে তা বেশ সহজে ধরা পড়ে অবশ্যই চেকআপ করানো একটি ভালো চিন্তা হবে অধিকাংশ সংক্রমণের কোনো উপসর্গ প্রকাশিত হয় না এবং চেকআপ করানোর মাধ্যমে তা বেশ সহজে ধরা পড়ে আপনি আপনার সঙ্গীকে যতই বিশ্বাস করুন না কেন তাদের অতীতের ইতিহাস নিশ্চিতরূপে আপনি জানতে পারবেন না এবং সেজন্য চেকআপ করানোই উত্তম এটার কোনো গড় হিসাব নেই কারন একেক ধরনের যৌনবাহিত সংক্রমণ একেক রকম হয় অনেক যৌনবাহিত সংক্রমণের চিকিৎসা একটি ডোজের মাধ্যমে করা হয় তবে কয়েকটি চিকিৎসার পর কোর্সের মেয়াদ ১ থেকে ২ সপ্তাহ বা তার থেকেও দীর্ঘ হতে পারে সাধারণত একজন ডাক্তার আপনার যৌন ইতিহাস নিয়ে জানতে চাইবেন এবং আপনার কোন পরীক্ষাটি করা প্রয়োজন তা নিয়ে পরামর্শ দিবেন আপনার ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত সাধারণত একজন ডাক্তার আপনার যৌন ইতিহাস নিয়ে জানতে চাইবেন এবং আপনার কোন পরীক্ষাটি করা প্রয়োজন তা নিয়ে পরামর্শ দিবেন এইচআইভি ও সিফিলিস নির্ণয়ের জন্য আপনাকে শুধুমাত্র রক্ত পরীক্ষা এবং ক্লাইমিডিয়া ও গনোরিয়ার জন্য মূত্র পরীক্ষা করাতে হবে কিছু কিছু মহিলাদের ক্ষেত্রে তুলা দ্বারা যোনির অভ্যন্তরীণ পদার্থ পরীক্ষা করা হয় কিছু কিছু পুরুষদের ক্ষেত্রে লিঙ্গের অগ্রভাগ থেকে সামান্য কিছু নমুনা তুলা দ্বারা সংগ্রহ করা হয় কর্মরত পরীক্ষক চিকিৎসা পদ্ধতির বিস্তারিত আপনাকে বলবেন আপনার হাতেই পুরো নিয়ন্ত্রণ থাকবে তাই পরামর্শকৃত কোনো পরীক্ষা আপনার পছন্দ না হলে সে সম্পর্কে তাদের বলুন অনিরাপদ (কনডম বিহীন) যোনিগত অথবা অ্যানাল সেক্স না করলে এইচআইভি তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষেত্রে কম থাকে চুম্বন অথবা স্পর্শ করার মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না অনিরাপদ (কনডম বিহীন) যোনিগত অথবা অ্যানাল সেক্স না করলে এইচআইভি তে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা ক্ষেত্রে কম থাকে চুম্বন অথবা স্পর্শ করার মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে না ওরাল সেক্স এর ক্ষেত্রে এইচআইভি তে আক্রান্ত হওয়ার স্বল্প ঝুঁকি থাকে বিশেষ করে তিনি যদি আপনার মুখের সংস্পর্শে আসে ওরাল সেক্সের জন্য কিছু সংখ্যক ব্যক্তি কনডম (আপনি ফ্লেভার্‌ড বা স্বাদযুক্ত কনডম নিতে পারেন) ব্যবহার করেন যদি কোনো পুরুষ আপনাকে ওরাল সেক্স প্রদান করে তাহলে সেক্ষেত্রে এইচআইভি এর কোনো ঝুঁকি থাকে না এটি এসটিআই ছড়িয়ে পড়ার পদ্ধতিসমূহের অন্তর্ভূক্ত নয় অন্য ব্যক্তি বাথ টাব ব্যবহারের পর পরই তা পানি দিয়ে ভালোভাবে ধুয়ে নেয়া একটি ভালো চিন্তা কেননা আপনি নিশ্চয় অন্যের ময়লা যুক্ত স্থানে গোসল করতে চাইবেন না তবে বাথটাব জীবাণুমুক্ত করার প্রয়োজন হয় না কারন এটি এসটিআই ছড়িয়ে পড়ার পদ্ধতিসমূহের অন্তর্ভূক্ত নয় আপনার পুরুষাঙ্গের অগ্রভাগে কি র‌্যাশ (ফুসকুড়ি) দেখা যাচ্ছে অথবা মুত্রত্যাগের সময় আপনি কি ব্যথা বা যন্ত্রণাবোধ করছেন যদি র‌্যাশ হয় তাহলে আপনি পুরুষাঙ্গের ক্ষত বা ঘায়ের সমস্যায় ভুগছেন এটি একটি সাধারন সংক্রমণ যা ফাংগাস যা ছত্রাক সৃষ্ট এবং এটি যৌনবাহিত নয় ফার্মেসিতে প্রাপ্ত ক্লোট্রিমাজল ক্রীম এ সমস্যা দূর করতে পারে যদি এতে কাজ না হয় তাহলে চেকআপ বা পরীক্ষা করান মূত্রত্যাগের সময় আপনি যদি ব্যথা অনুভব করেন তাহলে পুরুষাঙ্গের নালী যৌনবাহিত সংক্রমণে আক্রান্ত হতে পারে ডাক্তারের পরামর্শ নিন অথবা চেকআপ বা পরীক্ষা করান এবং এর চিকিৎসা গ্রহণ করুন যদি আপনার পুরুষাঙ্গে ক্ষত থাকে তাহলে আপনার সঙ্গীকেও চিকিৎসা গ্রহণ করতে হবে তরল স্রাব হওয়া যদিও স্বাভাবিক হতে পারে তবে এর সাথে আঁশটে গন্ধ এর মতো অন্যান্য উপসর্গ যদি দেখা যায় তাহলে ডাক্তার দেখানো অত্যাবশ্যক এ জাতীয় সমস্যার পিছনে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস (বিভি) নামক একটি অত্যান্ত সাধারণ সংক্রমণে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি থাকে এ সমস্যা যৌনবাহিত নয় এবং এটির পরীক্ষা ও চিকিৎসা গ্রহণ সহজ আপনার গাইনাকোলোজিস্ট বা নিকটস্থ পরিবার পরিকল্পনা কেন্দ্রে যান সেখানে তারা সমস্যা সম্পর্কে বলতে পারবে এবং চিকিৎসা প্রদান করতে পারবে এমনকি আপনার ডাক্তার আপনার মাকে চিনে থাকলেও আপনি ডাক্তারের কাছে কখনো পরামর্শ বা চিকিৎসা গ্রহণের জন্য গেলে আপনার গোপনীয়তার অধিকার রক্ষা করা উনার দায়িত্ব বা কর্তব্য নারীদের ক্ষেত্রে যোনিপথে তরল জাতীয় পদার্থ বের হয়ে আসা ( ভ্যাজাইনাল ডিসচার্জ) স্বাভাবিক এবং এ তরল যোনির স্বাভাবিক পদার্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি তবে এ সমস্যা যদি নতুন হতে দেখা যায় তাহলে আপনি হয়ত যোনির সংক্রমণে আক্রান্ত এ সমস্যার পিছনে দায়ী সবচেয়ে সাধারণ সংক্রমণসমূহ যৌনবাহিত নয় তবে ডাক্তার বা যৌন রোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নেয়া ভাল মূত্রথলির সংক্রমণ বা সিস্টাইটিসের সবচেয়ে প্রচলিত কারণ হচ্ছে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ যদি ব্যাকটেরিয়া মুত্রথলিতে পৌঁছে যায় তাহলে সেখানে বংশবৃদ্ধি ঘটায় এবং মুত্রাশয়ের আবরনে যন্ত্রণার সৃষ্টি করে এবং সিস্টাইটিসের উপসর্গের দিকে এগিয়ে যায় মুত্রনালীর চারপাশে ক্ষত ও আঘাতের ফলেও সিস্টাইটিস হতে পারে এটি ঘটতে পারে যদি মুত্রথলি সঠিকভাবে খালি করা না হয় তাই ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণকে প্রতিহত করার জন্য প্রতিবার প্রস্রাব করার সময় মুত্রথলি সম্পুর্ণরূপে খালি করার চেষ্টা করুন (১) আপনার মুত্রাশয়ের মধ্যে কোথাও প্রতিবন্ধকতা থাকলে – এটি টিউমার বা পুরুষদের মধ্যে বর্ধিত প্রস্টেট (পুরুষাঙ্গ ও মুত্রাশয়ের মধ্যে অবস্থিত গ্রন্থি) এর কারণে হতে পারে (২) আপনি গর্ভবতী হলে গর্ভাবস্থা শ্রোণী অঞ্চল ও মুত্রাশয়ে চাপ সৃষ্টি করে (৩) মলদ্বারে সৃষ্ট ব্যকটেরিয়া মুত্রনালীতে স্থানান্তরের মাধ্যমেও ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণ ঘটতে পারে এটি পুরুষের চেয়ে মহিলাদের মধ্যে বেশি প্রচলিত যেহেতু মহিলাদের মুত্রনালী মলদ্বারের অপেক্ষাকৃত কাছাকাছি হয় (১) যৌনমিলনের সময় (২) টয়লেটে যাওয়ার পর পরিষ্কার করার সময় (এই সময় ব্যাকটেরিয়া স্থানান্তরের সম্ভাবনা কমানো যায় যদি আপনি সামনে থেকে পেছনের দিকে পরিষ্কার করেন) (৩) কোন তুলার পট্টি ঢুকালে (৪) জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য গর্ভনিরোধক ব্যবহার করলে (৫) যেসব নারীরা মেনোপেজের মধ্য দিয়ে গিয়েছেন বা যাচ্ছেন ইস্ট্রোজেন হরমোনের অভাবে তাদের মূত্রনালী ও মূত্রথলির আবরন অপেক্ষাকৃত পাতলা হয়ে যায় এই পাতলা আবরনের সংক্রমিত হওয়ার বা ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে (৬) মেনোপেজের পর মহিলাদের যোনি থেকে অল্প পরিমানে ক্ষরণ হয় এর মানে ব্যাকটেরিয়ার বংশবৃদ্ধির সম্ভাবনা বেশি থাকে মূত্রনালীর সংক্রমণ মূত্রনালির বিভিন্ন অংশ কে প্রভাবিত করে এটি কিডনি ও এর বাইরের অধিকাংশ অংশ থেকে শুরু হয়ে থাকে যাকে মূত্রনালি বলা হয় এটি অন্যান্য যৌন বাহিত রোগের মত নয় সম্পূর্ণভাবে আলাদা একটি সমস্যা যা আপনার অন্ত্রে বাস করা সামান্য ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া দ্বারাও হতে পারে (১) মূত্র ত্যাগ করার সময় জ্বালা করে(২) সাধারণভাবে প্রয়োজনের চায়তে বেশি বার প্রসাব হবার অনুভূতি হয়(৩) প্রসাব আটকিয়ে রাখা যায় না এমন অনুভব হয় (৪) কারও কারও প্রসাবে রক্ত ও দেখা যায় (৫) জ্বর আসতে পারে (৬) কোমরে ব্যাথা হতে পারে অবশ্যই যে কারও জন্য এই সমস্যাটি ব্যাথাময় এটির সংক্রমণ আপনার কিডনিকে প্রভাবিত করতে পারে এটি আপানার কিডনি এবং মূত্রাশয়ে পাথর হবার সুযোগ বাড়িয়ে দেয়গর্ভাবস্থায় এটি বিপদজনক হতে পারে জরায়ুতে ছড়িয়ে পড়তে পারে এবং বাচ্চার থলিকে ক্ষতি গ্রস্থ করতে পারে এটি সম্পূর্ণরূপে বিপদজনক (১) গর্ভবতী মহিলার(২) যুবতী যৌন সক্রিয় নারী ( বাংলাদেশে সাধারণত যারা নববিবাহিত নারী ) (৩) যদি আপনাকে ক্যাথিটার দেয়া হয় অথবা সে জায়গায় অন্য কোন মেডিক্যাল কার্য প্রণালী করা হয়েছে এমন যদি হয়(৪) যদি কোন প্রতিবন্ধকতা থাকে ( এটি শুধু মাত্র ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করে উদ্ঘাটন করুন ) (১) দিনে কমপক্ষে ৮ গ্লাস পানি পান করুন (২) নিয়মিত মূত্রাশয় খালি রাখুন অন্তত ৩ ঘণ্টায় একবার এবং অবশ্যই ঘুমাতে যাবার আগে (৩) সংক্রমণের শুরুতেই আপনার খাবার পানিতে এক চামচ বেকিং সোডা যোগ করার চেষ্টা করুন (৪) ভিটামিন সি নেয়া বাড়িয়ে দিন (৫) ক্যাফিন এবং অ্যালকোহল পরিত্যাগ করুন (৬) সূতি অন্তর্বাস পরিধান করুন এবং নিচে আঁটসাঁট কাপড় পরা হতে বিরত থাকুন (৭) আপনি যখন সংক্রমণ বহন করছেন আপনার জন্য উত্তম হবে মিলন থেকে বিরত থাকা কিন্তু আপনার সঙ্গী যদি কনডম পরিধান করেন তাহলে আপনি এই সংক্রমণ ছড়ানো হতে নিরাপদ থাকবেন এটি মনে রাখা গুরুত্বপূর্ণ যে মিলনের পূর্বে এবং পরে প্রসাব করতে হবে উভয় সঙ্গীকেই পরে পরিস্কার হতে হবে (৮) চিকিৎসককে দেখানোর পূর্বে আপনি বিবেচনা করতে পারেন প্রসাবের একটি রুটিন দূরবীক্ষণ এবং সাংস্কৃতিক পরীক্ষা করাতে পারেন এতে আপনাকে বার বার ডাক্তার দেখাতে যেতে হবেনা (৯) বিশ্বজনীন ভাবে ক্র্যানবেরির রস গাছামো প্রতিষেধক হিসেবে বিবেচনায় করা হচ্ছে ইউ টি আই এর জন্য কিন্তু এটি অনেক দেশের অনেক জায়গাতেই পাওয়া যায়না যারা এই রোগে আক্রান্ত তারা দিনে যতটা সম্ভব এক কাপ আনারসের রস নেবার চেষ্টা করুন আনারসে একটি এনজাইম থাকে যা এই সংক্রমন সারাতে সাহায্য করে যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সাথে যদি কোন সুস্থ ব্যক্তি যৌন মিলন করে তবে সেই যৌনবাহিত রোগ সংক্রমিত হতে পারে সাধারণত জননাঙ্গে বা দেহের কোন স্থানে যদি কোন কাটা বা ক্ষত থাকে তবে সেই পথে খুব সহজে ভাইরাস সংক্রমন ঘটাতে পারে সেজন্য যৌন মিলনের সময় অবশ্যই সুরক্ষা হিসেবে কনডম ব্যবহার করা উচিত অনেক ধরণের যৌনবাহিত রোগ আছে তন্মদ্ধে সবচেয়ে বেশি বিস্তার যেগুলোর সেগুলো হলোঃ গনোরিয়া সিফিলিস ক্ল্যামাইডিয়াক্যান্ডিডিয়াসিস এবং এইচআইভি/এইডস এই রোগগুলোর সবচেয়ে বড় সমস্যা হল এদের লক্ষণ প্রাথমিক পর্যায়ে সহজে ধরা যায় না এবং এদের ভাইরাস অনেকদিন পর্যন্ত দেহে সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে সময় থাকতে এগুলোর চিকিৎসা করা না হলে দেহের স্থায়ী ক্ষতি হতে পারে না এটা সত্য নয় যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা আপনার যৌনাচার এর উপর নির্ভর করে আপনার যদি শুধুমাত্র একজন যৌন সঙ্গী থাকে এবং আপনার সঙ্গীর ও যদি অন্য কোন যৌন সঙ্গী না থেকে থাকে তাহলে আপনাদের দুইজনেরই যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার কোন সম্ভাবনা নেই একাধিক সঙ্গীর সাথে যথাযথ সতর্কতা অবলম্বন ছাড়া যৌনাচার এ লিপ্ত হলে যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা বহুগুনে বেড়ে যায় না সহবাসের পরে নিজেকে ধুয়ে আপনি যৌন সংক্রমণ এড়াতে পারবেন না যৌনরোগ সম্পর্কিত জীবাণুগুলি সংস্পর্শের সাথে সাথে সরাসরি দেহে প্রবেশ করে এবং আপনার রক্তে অবস্থান নেয় হ্যা বীর্যপাতের পূর্বে কোন পুরুষ তার লিঙ্গ প্রত্যাহার করে নিলেও তার সঙ্গীর অথবা তার যৌনবাহিত রোগ হওয়ার সম্ভাবনা আছে যৌনরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের সাধারণত জননাঙ্গে ছোট ক্ষত বা ঘা থাকে এবং এই ক্ষতের মধ্য দিয়ে খুবই সহজে রোগের জীবাণু তার সঙ্গীর দেহে স্থানান্তর হয়ে সংক্রমণ ঘটাতে পারে হ্যাঁ পায়ু সঙ্গমে যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা আছে কারণ মলদ্বারের ভিতরে ত্বক খুব নরম থাকে এবং সেখানে যোনিপথের মত কোন পিচ্ছিলকারী তরল পদার্থ থাকে না ফলে সহবাসের সময় ঘর্ষণে খুবই সহজে ছোট ক্ষত তৈরি হতে পারে এই ক্ষতের মধ্য দিয়ে খুব সহজে রোগের জীবাণু দেহে স্থানান্তর হয়ে সংক্রমণ ঘটাতে পারে ভিন্ন ভিন্ন রোগের সুপ্তিকাল ভিন্ন ভিন্ন যেমন গনোরিয়ার ক্ষেত্রে ১ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে লক্ষণ প্রকাশ পায় কিন্তু এইডস এর ক্ষেত্রে সুপ্তিকাল ৩ মাস থেকে ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে কিছু কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে লক্ষণ বেশ তাড়াতাড়ি প্রকাশ পায় এবং কিছু ব্যক্তির ক্ষেত্রে অনেক দেরি তে প্রকাশ পায় অতএব সুপ্তিকালের নিরধারিত কোন সময় নেই যৌন রোগের পরিণতি রোগটির প্রকার এর উপর নির্ভর করে অস্থায়ী পরিণতির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোঃ ছোট ক্ষত বা ঘা জননাঙ্গে চুলকানি বা ব্যথা জননাঙ্গ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব নিঃসরণ মুত্রত্যাগ এর সময় জ্বালাপোড়া ইত্যাদি এগুলোর সঠিক চিকিৎসা না করা হলে স্থায়ী পরিণতি দেখা যেতে পারে যেমন মহিলাদের ডিম্বনালী বদ্ধ হয়ে যাওয়া ফলে ডিম্বাণুগুলো জরায়ুতে পৌছাতে পারে না এবং বন্ধ্যাত্ব দেখা যায় পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রস্রাবের নালী বন্ধ হয়ে যাওয়া অনেক সময় যৌনবাহিত রোগ পুরুষ নারী ও অনাগত বাচ্চার মানসিক ব্যাধি বন্ধ্যাত্ব এমনকি মৃত্যুর কারণও হতে পারে কিছু কিছু রোগের ক্ষেত্রে লক্ষণ খালি চোখেই দেখা যায় যেমন জননাঙ্গে ক্ষত বা ঘা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব ইত্যাদি তবে অনেক সময় এসব ক্ষত দেহের ভিতরে হয়ে থাকে আবার অনেক সময় অন্য কোন কারণেও হয়ে থাকতে পারে সেজন্য যদি কোন বিশেষ লক্ষণ দেখা যায় বা সন্দেহ হয় তাহলে ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত এবং উপযুক্ত পরিক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া উচিত শারীরিক পরীক্ষা এবং রক্ত পরিক্ষার মাধ্যমে ডাক্তার নিশ্চিতভাবে আপনার সমস্যা বলতে পারবেন এবং প্রয়োজনীয় চিকিৎসা প্রদান করতে পারবেন পুরুষদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ সাধারণত মুত্রনালীতে হয়ে থাকে মেয়েদের আভ্যন্তরীণ জননাঙ্গের থেকে ছেলেদের মূত্রনালিতে চুলকানি এবং ব্যাথা তুলনামূলকভাবে সহজে অনুধাবন করা যায় বিশেষভাবে মুত্রের মধ্যে উপস্থিত ক্ষারজাতীয় পদার্থ মুত্রনালীর ভিতরে সৃষ্ট ক্ষত এর মধ্যে অস্বস্তিকর অনুভূতি তৈরি করে অন্যদিকে মেয়েদের যোনীতে বিশেষ পদার্থ তৈরি হয় যা ত্বকে অস্বস্তিকর অনুভূতির উপশম ঘটায় দুর্ভাগ্যক্রমে এই পদার্থগুলো রোগপ্রতিরোধে কোন ভূমিকা রাখে না শুধু লক্ষণ প্রকাশে বিলম্বিত করে সেজন্য ছেলেদের লক্ষণ মেয়েদের তুলনায় দ্রুত প্রকাশ পায় হ্যাঁ বেশকিছু যৌনরোগের চিকিৎসা আছে যেমন গনোরিয়া সিফিলিস ক্ল্যামাইডিয়া ক্যান্ডিডিয়াসিস ইত্যাদি যদি উপযুক্ত সময়ে এইসব রোগের চিকিৎসা করানো হয় তবে খুব সহজে রোগ থেকে মুক্ত হওয়া যায় দুর্ভাগ্যক্রমে এইডস রোগের এখনও কোন চিকিৎসা আবিষ্কার হয়নি সেজন্য আমাদের সর্বদা সতর্ক থাকা উচিত উচ্চ রক্তচাপের যদি চিকিত্সা করা না হয় তাহলে তা হৃদরোগ বা স্ট্রোকের ঝুঁকি বৃদ্ধি করে এই সমস্যা যে আছে তা বোঝার একমাত্র উপায় হচ্ছে নিয়মিত আপনার রক্তচাপ পরিমাপ করা সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরই উচিত তাদের রক্তচাপ প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর পরিমাপ করে দেখা যদি আপনি আপনার রক্তচাপ ইদানীং পরিমাপ করে না থাকেন অথবা স্বাভাবিক অবস্থায় আপনার রক্তচাপ কি তা যদি আপনি না জেনে থাকেন তাহলে এখনই এই ব্যাপারে আপনি আপনার ডাক্তারের সাথে কথা বলুন এবং তাকে আপনার রক্তচাপ পরিমাপ করে দেখে দিতে বলুন রক্ত প্রবাহের সময় রক্তনালীর গায়ে যে চাপ দেয় তাই রক্তচাপ রক্তের চাপ পারদ (mmHg) এর মিলিমিটারে মাপা হয় এবং এর পরিমাপ দুইটিঃ– সিস্টোলিক চাপ – যখন আপনার হৃৎপিণ্ড রক্ত পাম্প করে সারা শরীরে পাঠায় এটি হচ্ছে তখনকার রক্তের চাপ ডায়াসটোলিক চাপ – দুই হৃদ স্পন্দনের মাঝখানে যখন আপনার হৃৎপিণ্ড বিশ্রাম নেয় এটি হচ্ছে তখনকার রক্তের চাপ এটি একটি আন্দাজ দেয় যে কত জোরালোভাবে আপনার ধমনীতে রক্ত প্রবাহের প্রতিফলন রোধ হচ্ছে আপনার রক্ত চাপ ১৪০ বাই ৯০ হলে সিস্টোলিক চাপ ১৪০ mmHg এবং ডায়াসটোলিক চাপ ৯০ mmHg আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার সম্ভাবনা বাড়ে উচ্চ রক্তচাপ হওয়ার কোনো সুস্পষ্ট কারণ প্রায়ই পাওয়া যায় না কিন্তু আপনার ঝুঁকি বেশী থাকে যদি – আপনার ওজন অনেক বেশী হয় আপনার আত্মীয়স্বজনের উচ্চ রক্তচাপ আছে আপনি ধূমপান করেন আপনি আফ্রিকান বা ক্যারিবিয়ান বংশদ্ভুত অতিরিক্ত লবণ খান যথেষ্ট ফল এবং সবজি খান না যথেষ্ট ব্যায়াম করেন না খুব বেশী কফি (অথবা অন্যান্য ক্যাফিন জাতীয় পানীয়) পান করেন খুব বেশী মদ্য পান করেন ৬৫ বছরের বেশী বয়সী হন উচ্চ রক্তচাপের সাধারণত কোন সুস্পষ্ট লক্ষণ থাকে না এবং অনেক মানুষই জানেনা যে এটা তাদের আছে এই উচ্চ রক্তচাপের যদি চিকিত্সা করা না হয় তাহলে স্ট্রোক হৃদরোগ ও কিডনি সমস্যা সহ অনেক গুরুতর রোগ হতে পারে আপনার উচ্চ রক্তচাপ আছে কি না তা জানার একমাত্র উপায় হল নিয়মিত রক্তচাপ পরিমাপ করা সব প্রাপ্তবয়স্ক মানুষেরই উচিত তাদের রক্তচাপ নিম্নতম প্রতি পাঁচ বছর অন্তর অন্তর পরিমাপ করে দেখা একজন ব্যক্তির যদি অনেক বেশী উচ্চ রক্তচাপ থাকে তাহলে কোন কোন ক্ষেত্রে তারা কিছু উপসর্গ অনুভব করতে পারেন যেমন – (১) ক্রমাগত মাথা ব্যাথা (২) ঝাপসা দেখা বা একটি জিনিস দুইটি দেখা (৩) নাক দিয়ে রক্ত পরা (৪) শ্বাসকষ্ট আপনি যদি লক্ষ্য করেন যে আপনার এই সব উপসর্গের কোনটি আছে তাহলে দেরী না করে শীঘ্র আপনার ডাক্তারের সাথে দেখা করুন হৃদপিণ্ড হচ্ছে এক ধরনের মাংসপেশি যা সারা শরীরে রক্তসঞ্চালন করে এবং প্রতি মিনিটে প্রায় ৭০ বার স্পন্দিত হয় রক্ত হৃদপিণ্ডের ডান অংশ থেকে বেরিয়ে ফুসফুসে গিয়ে অক্সিজেনের সাথে মেশে অক্সিজেন মিশ্রিত রক্ত সেখান থেকে আবার হৃদপিণ্ডে ফিরে যায় এবং সেখান থেকে ধমনির মাধ্যমে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গপ্রত্যঙ্গে ছড়িয়ে পড়ে অঙ্গপ্রত্যঙ্গসমুহ থেকে রক্ত শিরাউপশিরার মাধ্যমে আবার হৃদযন্ত্রে ফিরে আসে এবং সেখান থেকে আবার ফুসফুসে যায় এই পুরো প্রক্রিয়াটিকে রক্ত সঞ্চালন প্রক্রিয়া বলে হৃদপিণ্ডে রক্তসরবরাহকারি ধমনিসমুহে চর্বিযুক্ত পদার্থ জমে যাওয়ার কারনে হৃদপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ ব্যাহত হওয়া বা বন্ধ হয়ে যাওয়াকে CHD বলে সময়ের সাথে সাথে সাথে আপনার ধমনির গায় চর্বিজাতীয় পদার্থ জমতে পারে এই প্রক্রিয়াকে atherosclerosis (অ্যাথেরোস্ক্লেরোসিস) বলে এবং জমে যাওয়া চর্বিকে বলে atheroma হৃদপিন্ড কে সরবরাহকারী কোন ধমনী দিয়ে রক্ত সরবরাহ যদি পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায় তাহলে হৃতপিন্ড এর অংশ বিশেষ প্রচন্ড ভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয় এবং যেটার জন্য মৃত্যু ও হতে পারে এটাকেই হার্ট এটাক বলা হয়ে থাকে এ সময় রোগী কে সবচেয়ে দ্রুততম সময়ে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া উচিত অত্যাধিক ঘাম বুক ধরফর করা হাপানি মাথা ঘুরানো আপনার বদহজম এর মত অনুভূতি বুক ব্যথা জালাপরা এবং পেট ব্যথা অনুভূত হবে তাছাড়াও আপনার বাম হাতঘাড় ও চওয়াল এও ব্যথা অনুভূত হতে পারে ১৫মিনিটের বেশি সময় ধরে বুকে ব্যথা হলে হার্ট এটাক এর আশংকা করা হয় মাঝে মাঝে হার্ট এটাক এর কোনো লক্ষণ প্রকাশ না ও পেতে পারে এটা সাধারনত ডায়াবেটিস রোগীদের ক্ষেত্রে বেশি দেখা যায় হার্ট এটাক যেকোনো সময় হতে পারেএমনকি আপনি বিশ্রামে থাকা অবস্থায়ও হতে পারে হৃদরোগ এর একটি জটিলতা হচ্ছে হার্ট ফেলিউর যেখানে আপনার হৃতপিন্ড দুর্বল হয়ে পরে এবং সঠিকভাবে শরীরে রক্ত সরবরাহ করতে পারেনা যার পরিক্রমায় আপনার ফুসফুসে পানি জমে এবং নিশাস নিয়া কঠিন হয়ে পরে এটা হঠাত করেও হতে পারে(একিউট হার্ট ফেলিউর) আবার অনেকদিন ধরেআসতে আসতেও হতে পারে(ক্রনিক হার্ট ফেলিউর) করোনারী হার্ট ডিজিজ হওয়ার প্রধান কারণগুলোর মধ্যে ধূমপান অন্যতম আপনি যদি ধূমপান ত্যাগ করেন এক বছর ধূমপানমুক্ত থাকার পর আপনার হার্ট অ্যাটাক হওয়ার সম্ভাবনা একজন ধূমপায়ীর থেকে অর্ধেক হয়ে যায় অতিরিক্ত ওজন হৃদরোগ হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় অতিরিক্ত চর্বিজাতীয় খাবার পরিহার করে ফল ও সবজি জাতীয় খাবারকে প্রাধান্য দিয়ে আপনার সুষম খাবার খাবেন সাথে দরকার অনুযায়ী শারীরিক পরিশ্রম করুন আমাদের বিএমআই ক্যালকুলেটরে দেখুন আপনার ওজন নিয়ন্ত্রণে আছে নাকি আপনাকে আরও কিছু ওজন কমাতে হবে আপনার রক্তচাপ ঠিক রাখতে খাবারের সাথে অতিরিক্ত লবণ ব্যবহার বন্ধ করুন প্রয়োজনে লবণ ব্যবহার কমিয়ে দিন সম্ভব হলে একেবারে বন্ধ করে দিন ধীরে ধীরে আপনি লবণ ছাড়াই অভ্যস্ত হয়ে যাবেন প্রক্রিয়াজাত খাবারে অতিরিক্ত লবণ থাকে এ ব্যাপারেও সতর্ক থাকুন প্রক্রিয়াজাত খাবারের লেবেল এর দিকে খেয়াল রাখুন যদি এতে প্রতি ১০০ গ্রামে ১৫ গ্রামের চাইতে বেশী লবণ থাকে বা ০৬ গ্রামের বেশী সোডিয়াম থাকে তবে এতে অতিরিক্ত লবণ আছে সুস্থ জীবনযাপন পদ্ধতি আপনার হার্টকে সুস্থ রাখে তাই আপনার হার্টকে ভাল রাখতে – শারীরিক পরিশ্রমের ব্যাপারে সক্রিয় হন ধূমপান পরিত্যাগ করুন ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন অতিরিক্ত লবণ ত্যাগ করুন তেলযুক্ত মাছ খান ( শিংমাগুর জাতীয় মাছ ইলিশ তেলাপিয়া এ ধরনের মাছগুলো ওমেগা৩ ফ্যাটের খুব ভাল উৎস যা হার্ট ডিজিজ থেকে আমাদের রক্ষা করে) হাঁটুন দুশ্চিন্তা তাড়ান চিন্তিত থাকলে এবং কাজের চাপ বেশী থাকলে আপনি দ্রুত হাঁটতে পারেন এতে আপনার দুশ্চিন্তা দূর হবে সম্পৃক্ত চর্বিও ত্যাগ করুন অ্যালকোহল ত্যাগ করুন স্যাচুরেটেড ফ্যাট সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে লাল মাংস ঘি মাখন পনির কেক ক্রিম নারিকেল তেল দিয়ে বানানো খাবার আনস্যাচুরেটেড সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে মাছের তেল বাদাম সূর্যমুখী জলপাই এবং অন্যান্য ভেজিটেবল অয়েল স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খাওয়া– কম তেল চর্বি ও বেশী আঁশযুক্ত খাবার এবং প্রচুর পরিমাণে ফলমূলশাক সবজি (দিনে ৫বার) আপনাকে রাখবে সুস্থ সবল এবং রোগ মুক্ত স্যাচুরেটেড ফ্যাট কলেস্টেরল বাড়ায়তাই এটা যত সম্ভব কম খাওয়া উচিত চিনি ও কাঁচা লবন কম খাওয়া কায়িক শ্রম উচ্চতা অনুযায়ী ওজন নিয়ন্ত্রণ ধূমপান ও এলকোহল ত্যাগ এবং নিয়মিত ঔষধ সেবন করুন একজন মানুষের স্বাভাবিক রক্তচাপ সর্বচ্চ ১৪০/৮৫ মিমি মার্কারি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণ এ রাখতে আপনার নিয়মিত ব্যায়াম কর এবং তেল চর্বি লবণাক্ত খাবার কম খাওয়া উচিত কোন ঔষধ থাকলে তাও নিয়মমাফিক সেবন করা উচিত হৃদরোগের প্রধান উপসর্গ বা লক্ষণসমূহ হচ্ছে বুকে ব্যাথা (যাকে ডাক্তারি ভাষায় এনজাইনা বলা হয়) এবং হার্ট এটাক তাছাড়াও বুক ধরফর অস্বাভাবিক হাপানি হঠাত করে অত্যাধিক ঘাম হওয়া ইত্যাদিও হৃদরোগের লক্ষণ হতে পারে এমনকি অনেক সময় কোনো লক্ষণ না থাকলেও আপনার হৃদরোগ থাকতে পারে কোন রক্তবাহী ধমনি বা শিরাতে রক্ত জমাট বেধে গেলে সেটাকে থ্রম্বসিস বলা হয় এরকম কোন থ্রম্বসিস যদি আপনার হৃৎপিণ্ডকে সরবরাহকারী কোন ধমনিতে হয় তাহলে আপনার হৃৎপিণ্ডে রক্ত সরবরাহ কমে গিয়ে হার্ট অ্যাটাক হতে পারে থ্রম্বসিস সাধারণত এথেরস্ক্লেরসিস এর জন্য এবং একই জায়গায় হয়ে থাকে যাকে ফারিং অব দি করোনারী আরটারি বলা হয় ● থায়রয়েড গ্রন্থি অত্যধিক সক্রিয় হলে ● রক্তে শর্করার পরিমান কমে গেলে ● রক্তস্বল্পতা (anaemia ) থাকলে ● রক্তচাপ কম হলে ● বেশি জ্বর (১০০º ফারেনহাইট বা ৩৮º সেলসিয়াসের বেশি) হলে ● শরীরে পানিশূন্যতা হলে ● হৃদরোগ হলে যদি আপনার ঘন ঘন বুক ধড়ফড় করে বা এর সাথে মাথা ঘোরা বা বুকে চাপ অনুভব করেন তাহলে আপনার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন আপনি হয়ত অনিয়মিত হৃদস্পন্দনের (arrhythmia) সমস্যায় ভুগছেন চিকিৎসক আপনার হৃদপিণ্ডের স্পন্দনের গতি ও ছন্দ মাপার জন্য ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ECG) করবেন এর দ্বারা আপনার কোন সমস্যা আছে কি না এবং চিকিৎসার প্রয়োজন আছে কি না তা তাৎক্ষনিকভাবে বুঝা যাবে তবে পরীক্ষা করার সময় যদি আপনার বুক ধড়ফড় না করে তাহলে ECGতে পুরোপুরি স্বাভাবিক রিপোর্ট আসবে আরও পরীক্ষা করার প্রয়োজন হতে পারে যা আপনার ডাক্তার ঠিক করবে হৃদস্পন্দনের সবচেয়ে সাধারণ সমস্যাগুলোর একটি হচ্ছে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশন (Atrial fibrillation) এবং এটি মস্তিস্কের রক্তক্ষরণ (stroke)এর অন্যতম প্রধান কারন যার ফলে রোগি চিরতরে পঙ্গু হয়ে যেতে পারে যাদের বয়স ৫৫এর উপরে তারা সাধারনত অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনে আক্রান্ত হয় এর ফলে দ্রুত অনিয়মিত হৃদস্পন্দন হয় যার ফলে বার বার বুক ধড়ফড় করে এর সাথে সাথে আপনি মাথা ঘোরা শ্বাস কষ্ট ও প্রবল ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনের কারণে সাধারণত জীবন সংশয় হয় না তবে এটি অস্বস্তিকর হতে পারে এবং চিকিৎসা দরকার হতে পারে অ্যাট্রিয়াল ফিব্রিলেশনের মতই আরেকটি অসুখ হচ্ছে সুপরাভেন্ট্রিকুলার ট্যাকিকার্ডিয়া বা SVT (Supraventricular tachycardia) এর ফলেও হৃদপিণ্ড মাঝে মাঝে খুব দ্রুত স্পন্দিত হয় কিন্তু তা সাধারনত একই ছন্দে চলতে থাকে এবং অনিয়মিতভাবে স্পন্দিত হয়না SVTএর আক্রমন সাধারণত বিপদজনক নয় এবং এটি কোন রকম চিকিৎসা ছাড়া নিজে নিজেই স্বাভাবিক হয়ে যায় তবে এটি দীর্ঘ সময় ধরে হলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত হৃদস্পন্দনের ছন্দের অন্যান্য সমস্যার কারণেও বুক ধড়ফড় করতে পারে যা পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত হওয়া সম্ভব যদি আপনার চিকিৎসক আপনার হৃদপিণ্ডের সমস্যাটি সঠিকভাবে নির্ণয় করতে সমর্থ হন তবে সেটি কি ধরনের তা আপনাকে বুঝিয়ে বলতে বলুন আপনি আমাদেরকেও আপনার পরীক্ষার রিপোর্টগুলো পাঠাতে পারেন এবং মায়া আপার (Maya Apa) পরামর্শ নিতে পারেন করোনারি হার্ট ডিজিজ এর প্রধান কারণ হচ্ছে করোনারি ধমনির দেয়াল এ প্লাক (plaque) জমা হওয়া এই প্লাক একধরনের ফ্যাট যা সাধারণত কোলেস্টেরল এবং অন্যান্য জিনিস এর সংমিশ্রণ এর তৈরি এবং একে মেডিকেল ভাষায় এথেরমা বলা হয় এথেরমা জমা হয়ে ধমনি সংকুচিত হয়ে তা দিয়ে স্বাভাবিক রক্ত প্রবাহ বন্ধ হয়ে যাওয়া কে এথেরোসক্লেরোসিস বলে যারা ধূমপায়ী যারা উচ্চ রক্তচাপ এ ভুগছেন যাদের রক্তে কোলেস্টেরল এর মাত্রা বেশি ডায়াবেটিস এর রোগী যারা শারীরিক পরিশ্রম কম করেন যারা অতিরিক্ত মোটা যাদের পরিবারে হৃদরোগের ইতিহাস আছে কোলেস্টেরল যকৃত দারা উৎপাদিত এক ধরনের ফ্যাট এটি আমাদের সুস্থতার জন্য আবশ্যক কিন্তু রক্তে অতিমাত্রায় কোলেস্টেরল আপনার হৃদরোগের কারণ হতে পারে রক্তে কোলেস্টেরল একধরনের প্রোটিনের ভেতর থাকে যাকে লাইপোপ্রোটিন বলা হয়এই লাইপোপ্রোটিন দুই ধরনের হতে পারে লোডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন (এলডিএল) বা হাইডেনসিটি লাইপোপ্রোটিন(এইচডিএল) এলডিএলযাকে খারাপ কোলেস্টেরল নামেও ডাকা হয় তা কোলেস্টেরলকে যকৃত থেকে কোষ এ সরবরাহ করে এলডিএল কোলেস্টেরল আমাদের রক্ত সরবরাহকারী ধমনির দেয়াল এ জমা হয়ে আমাদের হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়ায় এইচডিএল বা ভালো কোলেস্টেরলকোষ থেকে যকৃতে কোলেস্টেরল নিয়ে যায় যেখানে যকৃত কোলেস্টেরলকে ভেঙ্গে ফেলে এবং শরীর থেকে বর্জ্য হিসেবে বের করে দেয় ধূমপান স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর আমরা সবাই জানি তামাকে থাকা নিকোটিন এবং ধোঁয়ায় থাকা কার্বন মনো অক্সাইড আপনার হার্টবিট বাড়ায় এবং আপনার রক্ত ঘন করে তোলে যার জন্য রক্ত জমাট বাধার সম্ভাবনা বেরে যায় এসব ছাড়াও অন্যান্য অনেক ক্ষতিকর পদার্থ থাকে যা সরাসরি যেসব ধমনি আপনার হৃৎপিণ্ড কে রক্ত সরবরাহ করে সেসব কে দুর্বল করে দেয় একটি গবেষণায় বের হয়ে এসেছে যে ধূমপান আপনার হৃদরোগের আশংকা ২৪ বাড়িয়ে দেয় ডায়াবেটিস আপনার ধমনির দেয়াল মোটা করে তোলে যা রক্ত সরবরাহকে বাধাগ্রস্ত করে তোলে এবং হৃদরোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় এমন ব্যক্তিকে নির্বাচন করা উচিত যে আপনাকে সম্মান করে এবং যাকে আপনি বিশ্বাস করতে পারেন এমন কাউকে নির্বাচন করুন যার সাথে আপনি সবকিছু বন্ধুর মত ভাগ করতে পারেন যেকোন ব্যপার নিয়ে কোন বিবাদ ছাড়া আলোচনা করতে পারেন আপনার সঙ্গীর উচিত আপনার সকল সমস্যা বুঝতে পারা এবং সাহায্য করার মনোভাব থাকা এছাড়াও তার স্বাস্থ্য সম্পর্কেও জানা উচিত (যেমন সেই ব্যক্তি এইচআইভি/এইডস দ্বারা আক্রান্ত কিনা অথবা কোন বদভ্যাস আছে কিনা ইত্যাদি) সর্বোপরি অবশ্যই আপনার পরিবারের সাথে সেই ব্যক্তির পরিচয় করিয়ে দিবেন ও পরিবারের বড়দের পরামর্শ নিবেন এবং সেই ব্যক্তির পরিবারের সাথে আপনি নিজে পরিচিত হয়ে নিবেন এমন অবস্থায় আপনার পিতামাতার সাথে যোগাযোগ করা এবং তাদেরকে বোঝার চেষ্টা করা খুব গুরুত্বপূর্ণ মাঝে মাঝে মনে হতে পারে পিতামাতারা আপনার চিন্তাধারা বুঝে না অথবা ঐতিহ্যের কারনে কোনকিছু মেনে নিতে চায় না কিন্তু সবসময় মনে রাখা উচিৎ পিতামাতারা সর্বদা তাদের সন্তানের জন্য ভাল চান সেজন্য এমন পরিস্থিতিতে সম্মান ও মর্যাদার সাথে আপনার পরিবারকে বুঝানোর চেষ্টা করুন যে কেন আপনার সিদ্ধান্ত সঠিক সিদ্ধান্ত যদি আপনি আপনার পরিবারের সাথে আন্তরিকভাবে কথা বলতে দ্বিধাবোধ করেন তবে প্রথমে সহজ কোন বিষয় নিয়ে কথা বলা শুরু করুন কথা বলার জন্য ভাল সময় খুজে বের করুন তাদের সাথে আন্তরিক হওয়ার চেষ্টা করুন এবং তাদেরকে বুঝান যে তাদের মতামতকেও আপনি গুরুত্ব দেন এভাবে আপনি তাদের বিশ্বাস অর্জন করতে পারেন এবং ক্রমান্বয়ে উনারা হয়ত আরও বড় কোন ব্যপারে আপনার সিদ্ধান্ত মেনে নিতে রাজী হবেন তবুও আপনার পিতামাতা যদি মেনে নিতে রাজী না হন তবে বুঝে নিবেন আপনার ভালর জন্যই উনারা নিষেধ করছেন এবং সেখান থেকে আপনার সরে আসা উচিত এটি আপনার সঙ্গীর বাছাইয়ের ক্ষেত্রে যেমন প্রযোজ্য তেমনি জীবনের অন্যান্য চূড়ান্ত বিচারের ক্ষেত্রেও প্রযোজ্য সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হলো নিবিড়ভাবে যোগাযোগ করা আপনি যদি আপনার বন্ধুর উপর পুরোপুরি বিশ্বাস না করেন অথবা যদি আপনার মনে হয় যে সে আপনাকে বিশ্বাস করে না তবে আপনার সঙ্গীকে জিজ্ঞাসা করা উচিত এটি কেন হয় খোলাভাবে সবকিছু বলুন এবং কোনকিছু আড়াল ঙ্করবেন না আপনারা একে অপরকে ভালভাবে বুঝলে আন্তরিকভাবে আলোচনা করুন এবং সকল সন্দেহ দূর করার চেষ্টা করুন একটি দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক তৈরির প্রথম ধাপ হল সম্পর্কের ভিত্তি শক্ত করা সেজন্য কাউকে সঙ্গী হিসেবে নির্বাচন করার সময় কিছু জিনিস খেয়াল রাখা উচিত এমন কাউকে নির্বাচন করা উচিত যে আপনাকে সম্মান করে এবং যাকে আপনি বিশ্বাস করতে পারেন যার সাথে আপনি সবকিছু বন্ধুর মত ভাগ করতে পারেন এবং যেকোন ব্যপার নিয়ে কোন বিবাদ ছাড়া আলোচনা করতে পারেন আপনার সঙ্গীর উচিত আপনার সকল সমস্যা বুঝতে পারা এবং সাহায্য করার মনোভাব থাকা আপনাদের একে অপরের সাথে কথা বলা চালিয়ে যেতে হবে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়গুলি নিয়ে আলোচনা করতে হবে এবং যেই সমস্যা দেখা দেয় তার সমাধান খুঁজতে একসাথে কাজ করতে হবে আইনানুযায়ী মেয়েদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ বছর এবং ছেলেদের ২১ বছর যেহেতু বিয়ের সাথে অনেক দায়িত্ব এবং কর্তব্য জড়িয়ে থাকে সেজন্য বিয়ের জন্য উপযুক্ত বয়স সঠিকভাবে বলা যায় না ছেলেদের এমন সময় বিয়ে করা উচিত যখন সে একটি পরিবারের ভরণপোষণের এবং অন্যান্য ব্যপারের দায়িত্ব নিতে সক্ষম হবে মেয়েদের ২০ বছরের আগে বিয়ে করা উচিত নয় কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে ২০ বছরের কম বয়সী মেয়ে শারীরিকভাবে গর্ভধারণের জন্য প্রস্তুত থাকে না না স্বাভাবিক দৃষ্টিকোণ থেকে কোন মেয়ে কোন বয়স্ক পুরুষকে বিয়ে করলে বা যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হলে কোন অসুবিধা নেই তবে এক্ষেত্রে অবশ্যই কিছু জিনিস মনে রাখা উচিত যেমন ১) তাদের বয়সের পরিপক্বতার পার্থক্যের কারনে তাদের চিন্তাভাবনা পছন্দঅপছন্দ ও সমাজের মধ্যে অনেক পার্থক্য দেখা যাবে ফলে দুইজনই একইসাথে উপভোগ করতে পারে এমন কার্যক্রম খুব বেশি পাওয়া যাবে না ২) সন্তান লালনপালন বেশ কষ্টসাধ্য কাজ যদি স্বামীর বয়স ও অনেক বেশি হয় তবে স্ত্রীকে একইসাথে তার স্বামীকেও বিশেষ পরিচর্যা করতে হবে ফলে স্ত্রীর জন্য পরিবার এর দায়িত্ব পালন বেশ কষ্টসাধ্য হয়ে যাবে ৩) বয়স্ক স্বামীর যৌন চাহিদা সময়ের সাথে কমতে থাকবে কিন্তু কম বয়সী স্ত্রীর চাহিদা তখনও বেশি থাকবে এমন পরিস্থিতি দুইজনের মধ্যে ঝগড়া এবং অশান্তি সৃষ্টি করতে পারে সন্তান জন্মদান ছাড়া যৌন মিলনের অন্যান্য উদ্দেশ্যের মধ্যে রয়েছে আনন্দ উপভোগ প্রশান্তি মানসিক চাপ থেকে মুক্তি দীর্ঘস্থায়ী সম্পর্ক সৃষ্টি এবং সর্বোপরি দুইজন সঙ্গীর মধ্যে ভালবাসার অনুভূতি জাগ্রত করা যৌন মিলনের সময় বিশেষ কিছু যৌন হরমোন নির্গত হয় যা আমাদের সমস্ত অবসাদ দূর করতে সাহায্য করে এবং আনন্দের অনুভূতি জাগ্রত করে কিশোরকিশরীরা যৌন মিলনের ফলে বিভিন্ন সমস্যার সম্মুখীন হতে পারে কম বয়সে গর্ভধারণ তন্মধ্যে অন্যতম একজন কিশরীর শরীর গর্ভধারণের জন্য পরিপক্বতা অর্জন করে না সেজন্য গর্ভধারণে নানা জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় কখনও তা গর্ভপাতের ও কারণ হতে পারে এছাড়াও কিশোর বয়সে নানারকম শারিরীক ও মানসিক বৃদ্ধি ঘটে এবং বিভিন্ন বৃদ্ধিজনিত হরমোন নিঃসরণ হয় সেজন্য এই বয়সের ছেলেমেয়েরা আবেগের তাড়নায় ভুল সিদ্ধান্ত নিতে পারে এমনকি এইচআইভি/এইডস এর মত মারাত্মক ব্যধিতেও আক্রান্ত হতে পারে সেজন্য সার্বিক বিবেচনায় এই বয়সে যৌন মিলনে নিষেধ করা হয় না দীর্ঘ সময় যৌন মিলন না করলে কোন ক্ষতি বা অসুস্থতার সম্মুখীন হতে হবে না দীর্ঘ বিরতির পরে যদি কোন নারী বা পুরুষ আবার যৌন মিলন করে তবে সে আগের মতই উপভোগ করবে বয়ঃসন্ধিকালে মাঝে মাঝে যৌন উদ্দীপনা অনুভব করা খুবই স্বাভাবিক তবে এর মানে এই নয় যে যৌন মিলনের পথ বেছে নিতে হবে নিজেকে অন্যান্য কাজে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে যেমন ব্যয়াম পড়াশুনা বাসায় বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা অথবা কোন সামাজিক সংগঠনে যোগদান করা ইত্যাদি তবে কখনও হস্তমৈথুন বা পর্ণগ্রাফি এর পথ বেছে নেওয়া উচিত নয় কারণ গবেষণায় দেখা গেছে যারা পর্ণগ্রাফি তে আসক্ত হয়ে যায় তাদের বাস্তব জীবনে যৌন মিলনের প্রতি আগ্রহ কমে যায় এবং দাম্পত্য জীবনে কলহের সৃষ্টি হয় বয়ঃসন্ধিকালে মাঝে মাঝে যৌন উদ্দীপনা অনুভব করা খুবই স্বাভাবিক তবে এর মানে এই নয় যে যৌন মিলনের পথ বেছে নিতে হবে নিজেকে অন্যান্য কাজে ব্যস্ত রাখা যেতে পারে যেমন ব্যয়াম পড়াশুনা বাসায় বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা অথবা কোন সামাজিক সংগঠনে যোগদান করা ইত্যাদি তবে কখনও হস্তমৈথুন বা পর্ণগ্রাফি এর পথ বেছে নেওয়া উচিত নয় কারণ গবেষণায় দেখা গেছে যারা পর্ণগ্রাফি তে আসক্ত হয়ে যায় তাদের বাস্তব জীবনে যৌন মিলনের প্রতি আগ্রহ কমে যায় এবং দাম্পত্য জীবনে কলহের সৃষ্টি হয় কিছু পুরুষ কম বয়সী মেয়েদের নানাভাবে যৌন মিলনের জন্য প্রলোভন দেখায় কখনও তারা কোন প্রকার উপহার দেয় কখনও টাকা ব্যবহার করে সেজন্য যেকোন উপহার নেওয়ার আগে সকল ছেলেমেয়ের এটা বুঝার চেষ্টা করা উচিত যে উপহারটি কেন দেওয়া হচ্ছে কোন অসৎ উদ্দেশ্য বুঝতে পারলে উপহার ফিরিয়ে দিয়ে ভদ্রতার সহিত নিষেধ করা উচিত যদি নিজে প্রলুব্ধ অনুভব করেন তবে কম বয়সে সহবাসের উপকারিতা ও অপকারিতাগুলো চিন্তা করুন সহবাসের ঝুকিগুলো মনে করলে মনের মধ্যে না বলার সাহস আসবে এবং প্রলোভন উপেক্ষা করতে পারবেন এছাড়াও নিজের পরিবারকে অবশ্যই জানানো উচিত এবং তাদের পরামর্শ ও সাহায্য নেওয়া উচিত হ্যা এটা সম্ভব তবে এটা সম্পূর্ণরূপে সেই দম্পতির উপর নির্ভর করে উত্থিত অবস্থায় পুরুষের লিঙ্গ ৫ থেকে ৭ ইঞ্চি পর্যন্ত লম্বা হয় অনুত্থিত অবস্থায় ৩ থেকে ৪ ইঞ্চি না পুরুষের লিঙ্গের আকৃতির সাথে যৌন মিলনের তেমন কোন সম্পর্ক নেই সাধারণত নারীদের যোনী ৩ থেকে ৫ ইঞ্চি গভীর হয়ে থাকেএবং পুরুষের লিঙ্গ উত্থিত অবস্থায় সাধারণত ৫ থেকে ৭ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে সেজন্য স্বাভাবিক আকৃতির লিঙ্গই যৌন মিলনের জন্য যথেষ্ট বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে মেয়েদের দেহে নানারকম পরিবর্তন আসে সেগুলো হলোঃ ১) নিতম্ভ ও উরু ভারী হয় এবং স্তন বৃদ্ধি পায় ২) ত্বক তৈলাক্ত হয় এবং মুখে ব্রণ দেখা যায় ৩) যোনীর চারপাশে এবং বগলে লোম উঠে ৪) মাসিক চক্র শুরু হয় ৫) ছেলেদের প্রতি আকর্ষন তৈরি হয় এবং নিজেকে আকর্ষনীয় করে তোলার চেষ্টা করা হয় ৬) আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং বড়দের সাথে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহনের কাজে অংশগ্রহন করতে চায় বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে ছেলেদের দেহে নানারকম পরিবর্তন আসে সেগুলো হলোঃ ১) দেহের আকৃতি বড় ও ভারী হবে ২) বাহু এবং কাধ মোটা এবং শক্তিশালী হবে ৩) জননাঙ্গ আকৃতিতে বৃদ্ধি পাবে ৫) ত্বক তৈলাক্ত হয় এবং মুখে ব্রণ দেখা যায় ৬) লিঙ্গ এর চারপাশে বগলে মুখে এবং বুকে লোম উঠে ৭) গলার স্বর ভেঙ্গে যাবে এবং ভারী হবে ৮) লিঙ্গ প্রায় সময়ই খাড়া হবে এবং স্বপ্নদোষ ও বীর্যপাত হওয়া শুরু হবে ৯) মেয়েদের প্রতি আকর্ষন তৈরি হয় এবং নিজেকে আকর্ষনীয় করে তোলার চেষ্টা করা হয় ১০) আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং বড়দের সাথে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহনের কাজে অংশগ্রহন করতে চায় মেয়েদের বয়স বৃদ্ধির সাথে ডিম্বাশয়ে প্রতিমাসে একটি করে ডিম্বাণু উৎপাদন শুরু হয় উৎপাদিত ডিম্বাণু যদি পুরুষের শুক্রাণুর সাথে মিলিত না হতে পারে তবে তা অনিষিক্ত থেকে যায় ডিম্বাণু অনিষিক্ত থেকে গেলে তা নষ্ট হয়ে যায় এবং জরায়ুর আভ্যন্তরীন স্তরের সাথে যোনীপথে বের হয়ে আসে এভাবে ঋতুস্রাব হয়ে থাকে পুরুষের শুক্রাণু তার বীর্যে অবস্থান করে এবং নারীর ডিম্বাণু অবস্থান করে তার ডিম্বনালীতে যৌন মিলনের সময় পুরুষের বীর্য যদি নারীর যোনীতে প্রবেশ করে তবে যোনীপথে শুক্রাণু প্রবেশ করে ডিম্বনালীতে অবস্থিত ডিম্বাণুর সাথে মিলিত হয় নিরাপদ দিন' বলতে সেই দিনগুলিকে বুঝায় যেদিন নিষিক্ত হওয়ার জন্য কোন ডিম্বাণু ডিম্বনালীতে থাকে না নিরাপদ দিনে যৌন মিলন করলে গর্ভবতী হওয়া এড়ানো যায় তবে কিশোরীদের মাসিক সাধারনত অনিয়মিত হয়ে থাকে আবার দুঃখ মানসিক চাপ ভ্রমণ ইত্যাদির কারণে মাসিক চক্রের পরিবর্তন হতে পারে তাই দিন গুনে নিরাপদ দিন হিসাব করলে অনেকক্ষেত্রেই গর্ভাবস্থা এড়ানো যায় না কারণ মাসিক শুরু হলে ডিম্বাণু প্রস্তুত হলেও অন্যান্য জননাঙ্গ সন্তান বহন করার জন্য প্রস্তুত থাকে না একজন কিশোরীর জরায়ুর আকৃতি পুর্নবয়স্ক মহিলার থেকে ছোট হয় এবং জরায়ু প্রাচীর দুর্বল হয়ে থাকে কিশোরীর যোনী সন্তান প্রসবের সময় যথেষ্ট প্রসারিত হতে পারে না আবার তাদের শ্রোনীদেশের হাড় সংকুচিত থাকে ফলে সন্তান প্রসবের সময় সহজে শিশুর মাথা বের হয়ে আসতে পারে না এসব কারণে সন্তান বহনের সময় নানারকম জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় শারীরিক প্রস্তুতির পাশাপাশি সন্তান লালন পালন করাও অনেক বড় একটি দায়িত্ব যার জন্য একজন কিশোরী মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে না অতএব মাসিক শুরু হওয়া মানেই একজন কিশোরী গর্ভবতী হওয়ার জন্য প্রস্তুত এটা বলা যায় না না ছেলেদের মেয়েদের মত মাসিক হয় না মাসিক হলো মেয়েদের দেহে ডিম্বাণু তৈরি হওয়ার নির্দেশক ছেলেদের অনুরূপ শুক্রাণু তৈরী হওয়ার নির্দেশক হলো স্বপ্নদোষ তবে স্বপ্নদোষ মেয়েদের মাসিকের মত নিয়মিত প্রতিমাসে একবার না হয়ে বিক্ষিপ্ত সময়ে হয়ে থাকে শুক্রাণু হলো পুরুষ প্রজনন কোষ যা নারীর ডিম্বাণু এর সাথে মিলিত হয়ে সন্তান জন্মদানে অংশ নেয় শুক্রাণু পুরুষের অণ্ডকোষে তৈরী হয় এবং বীর্যের সাথে মিশ্রিত হয়ে লিঙ্গ থেকে বের হয়ে আসে কিছু কিছু ধর্ম এবং উপজাতির মধ্যে ছেলেদের খৎনা করানো হয় অর্থাৎ তাদের লিঙ্গের সামনের অংশের চামড়া কেটে ফেলা হয় মূলত ধর্মীয় কারণেই খৎনা করানো হয়ে থাকে এছাড়াও খৎনা করলে ছেলেদের লিঙ্গের পরিচ্ছন্নতা নিশ্চিত করা সহজতর হয় খৎনা না করানো হলে বীর্যপাতের সময় বীর্য লিঙ্গের সামনের চামড়ার মধ্যে আটকে যেতে পারে এবং সেটা কিছু কিছু রোগের ও কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে কিছু কিছু উপজাতির মধ্যে মেয়েদের খৎনা করানো হয় অর্থাৎ মেয়েদের ভগাঙ্কুর/ক্লিটরিস ও ল্যাবিয়ার কিছু অংশ কেটে ফেলে দেওয়া হয় একেক উপজাতি এর পিছনে একেক কারণ ব্যাখ্যা করে তবে একজন মেয়ের যৌবন চিহ্নিত করার জন্যই খৎনা করানো হয়ে থাকে চিকিৎসাবিজ্ঞান মতে মেয়েদের খৎনা করানোর কোন দরকার বা উপকারিতা নেই বরং এর ফলে বেশ কিছু নেতিবাচক পরিণতি হতে পারে যেমন গুরুতর রক্তক্ষরণ সংক্রমণ মুত্র ও ঋতুস্রাবের পথে বাধা এবং দেহের ভিতর সংক্রমণ হওয়া যৌন মিলন ও সন্তান জন্মদানের সময় জটিলতার সম্মুখীন হওয়া ইত্যাদি বয়ঃসন্ধিকালে দেহের বৃদ্ধির সময় নানা প্রকার হরমোন নির্গমন শুরু হয় ছেলেদের দেহে টেস্টেস্টেরন হরমোন এবং মেয়েদের দেহে এস্ট্রোজেন নামক হরমোন যৌন বিকাশে ভূমিকা রাখে এবং বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি আকর্ষণ তৈরি করে এমন সময় অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত যাতে কেউ যৌন সম্পর্কে লিপ্ত না হয় বয়ঃসন্ধিকালে যৌন মিলন যেমন শারীরিক ক্ষতি করতে পারে তেমনি নানারকম যৌনবাহিত রোগের কারণ হতে পারে বয়ঃসন্ধিকালে দেহের বৃদ্ধির সময় নানা প্রকার হরমোন নির্গমন শুরু হয় ছেলেদের দেহে টেস্টেস্টেরন হরমোন এবং মেয়েদের দেহে এস্ট্রোজেন নামক হরমোন যৌন বিকাশে ভূমিকা রাখে এই হরমোনগুলোই বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি আকর্ষণ এবং যৌন মিলনের জন্য আকাঙ্ক্ষা তৈরি করে এমন সময় অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত যাতে কেউ যৌন সম্পর্কে লিপ্ত না হয় বয়ঃসন্ধিকালে যৌন মিলন যেমন শারীরিক ক্ষতি করতে পারে তেমনি নানারকম যৌনবাহিত রোগের কারণ হতে পারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় কিশোরকিশোরীরা যৌন মিলন করে তেমন আনন্দ উপভোগ করে না সাধারণত কিশোর বয়সে যৌন মিলন পরিবার ও সমাজ ভালো দৃষ্টিতে দেখে না এছাড়াও যথেষ্ট জ্ঞান এর অভাবে গর্ভবতী হওয়া অথবা যৌনবাহিত রোগ এমনকি এইচআইভি/এইডস এ সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এসব ব্যাপারের জন্য যৌন মিলনের সময় মানসিক চাপ অনুভব হতে পারে ফলে আনন্দের পরিবর্তে এটি একটি দুশ্চিন্তার কারণ হয়ে দাঁড়ায় একেক মানুষ একেক সময় বয়ঃসন্ধিকালে উপনিত হয় আবার বয়ঃসন্ধিকালের সময়সীমাও সবার জন্য ভিন্ন হয় এগুলার পিছনে যেমন জৈবিক কারণ ও রয়েছে তেমনি সামাজিক কারণ ও রয়েছে জৈবিক কারণের মধ্যে রয়েছে বংশের জীনগত প্রভাব গ্রোথ হরমোন এর নিঃসরনের সময়ের পার্থক্য ইত্যাদি সামাজিক কারণের মধ্যে রয়েছে পারিবারিক শিক্ষা সামাজিক কার্যকলাপ সামাজিকীকরণ ইত্যাদি দেরিতে বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হওয়া অসুবিধার কিছু না কারো দেরিতে শুরু হবে কারো তাড়াতাড়ি এটাই স্বাভাবিক এর জন্য কোন চিকিৎসার প্রয়োজন নেই তবুও যদি তোমার নিজেকে নিয়ে চিন্তা হয় তবে কোন ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করতে পার বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের স্তন বেড়ে উঠতে দেখা যায় স্তন যখন বেড়ে উঠে তখন স্তনের ভিতরে নতুন কোষ তৈরি হতে থাকে এই নতুন কোষ তৈরি হওয়ার প্রক্রিয়া কিছুটা বেদনাদায়ক হতে পারে যার জন্য স্তনের উপর ব্যাথা করে ঋতুস্রাবের সময় ব্যাথা হওয়ার কারণ বুঝার জন্য প্রথমে ঋতুস্রাবের কারণ জানতে হবে প্রতিমাসে নারীদেহে একটি করে ডিম্বাণু পরিপক্ব হয় এবং জরায়ু প্রাচীর প্রস্তুত হয় নিষিক্ত ডিম্বাণু গ্রহনের জন্য ডিম্বাণু শুক্রাণুর সাথে মিলিত হলে নিষিক্ত হতে পারে কিন্তু মাসিক চক্রের শেষে ডিম্বাণু যদি অনিষিক্ত থেকে যায় তবে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আস্তরণ ভেঙ্গে যায় জরায়ুর পেশী সংকুচিত হয়ে সেই ভেঙ্গে যাওয়া আস্তরণকে যোনীর মুখের দিকে নিয়ে আসে ঋতুস্রাবের সময় ব্যাথা জরায়ুর এই সংকোচনের জন্যই হয়ে থাকে যদি এই ব্যাথা অত্যধিক বেশি হয় অথবা সাধারনের চেয়ে বেশি রক্তপাত হয় বা ঋতুস্রাব অনেকদিন স্থায়ী হয় তবে ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত প্রতিমাসে নারীদেহে একটি করে ডিম্বাণু পরিপক্ব হয় এবং জরায়ু প্রাচীর প্রস্তুত হয় নিষিক্ত ডিম্বাণু গ্রহনের জন্য ডিম্বাণু শুক্রাণুর সাথে মিলিত হলে নিষিক্ত হতে পারে কিন্তু মাসিক চক্রের শেষে ডিম্বাণু যদি অনিষিক্ত থেকে যায় তবে জরায়ুর অভ্যন্তরীণ আস্তরণ এবং এর মধ্যে অবস্থিত শিরাউপশিরা ভেঙ্গে যায় এবং রক্তমিশ্রিত স্রাব তৈরি করে জরায়ুর পেশী সংকুচিত হয়ে সেই ভেঙ্গে যাওয়া আস্তরণকে যোনীর মুখের দিকে নিয়ে আসে এবং যোনীপথে রক্তক্ষরণ হয় ইহা ঋতুস্রাব বা রজঃস্রাব নামেও পরিচিত ঋতুস্রাবের রক্ত পরিষ্কার করার জন্য প্রচলিত ব্যবস্থার মধ্যে রয়েছে স্যানিটারি প্যাড অথবা ট্যাম্পন স্যানিটারি প্যাড ব্যবহার করার জন্য ইহার আঠাযুক্ত পার্শ্ব আন্ডারপ্যান্ট এর ভিতরের দিকে লাগিয়ে আন্ডারপ্যান্ট পরতে হবে সেই স্যানিটারি প্যাডই ঋতুস্রাবের সময় বের হওয়া রক্ত শোষন করে নিবে ট্যাম্পন ব্যবহারের জন্য সেটিকে আঙুলের মাথায় নিয়ে আস্তে করে যোনীর ভিতর ঢুকিয়ে দিতে হয় ট্যাম্পনের বাহিরের প্রান্তে একটি সুতা ঝুলে থাকে ট্যাম্পনটি যখন বের করতে হবে তখন সেই সুতা দিয়ে হালকা করে টান দিলে টাম্পন বের হয়ে আসে সেই ট্যাম্পন ঋতুস্রাবের সব রক্ত শুষে নিবে ট্যাম্পন কখনো ৪ থেকে ৮ ঘন্টার বেশি যোনীতে রাখা উচিত নয় না ঋতুস্রাব বন্ধ করার জন্য কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করা যায় না সাধারণত মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল থেকে নিয়মিত ঋতুস্রাব শুরু হয় এবং ৪০ থেকে ৫০ বছর বয়স পর্যন্ত অব্যাহত থাকে হ্যাঁ নানা কারণে ঋতুস্রাব বন্ধ হতে পারে যেমন গর্ভবতী হওয়া সন্তান জন্মদানের পরবর্তী কিছু মাস অসুস্থ হওয়া (বিশেষত ম্যালেরিয়া রোগে আক্রান্ত হওয়া) শারীরিকভাবে ক্লান্ত থাকা মানসিক চাপে থাকা ঠিকমত খাবার গ্রহণ না করা ইত্যাদি নানা কারণে ঋতুস্রাব খুব সংক্ষিপ্ত এবং বেদনাবিহীন হতে পারে যেমন অসুস্থতা পরিবেশের পরিবর্তন অপরিচিত পরিবেশে কাজ করা মেজাজ এর পরিবর্তন (গভীর দুঃখ অথবা আনন্দ) খাদ্যাভাসে পরিবর্তন ইত্যাদি তবে ঋতুস্রাবের ধরনের পরিবর্তন যদু খুব আকস্মিকভাবে হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত একেক নারীর জন্য মাসিক চক্রের সময়কাল একেক রকম হয়ে থাকে কারো কারো ২৮ দিনে একবার মাসিক চক্র সম্পন্ন হয় কারো বা ২৮ দিনের কম কারো বেশি সেজন্য কোন নারীর ঋতুস্রাব যদি মাসের একদম শুরুতে হয়ে (১ বা ২ তারিখ) তবে মাসের শেষে আবার হওয়ার সম্ভাবনা থেকেই যায় এটা সম্পূর্ণ নির্ভর করে মাসিক চক্রের সময়কালের উপর তবে কিছুক্ষেত্রে দেখা যায় একজন নারীর মাসিক চক্রের মধ্যবর্তী সময়ে রক্তক্ষরণ হয় ইহা নানা কারণে হতে পারে যেমন অসুস্থতা ওষুধের ব্যবহার আবহাওয়া বা পরিবেশের পরিবর্তন ইত্যাদি তবে এমন ঘটনা বার বার ঘটলে অবশ্যই ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত এটি আপনার দেহের হরমোনের পরিবর্তনের ফলে ঘটে এটি খুবই স্বাভাবিক একটি ঘটনা এবং এটি নিয়ে বেশি চিন্তিত হওয়ার কোন কারণ নেই এর প্রতিকার করতে চাইলে তেমন কোন ওষুধ পাওয়া যাবে না তবে মেজাজ স্বাভাবিক রাখার জন্য নিজেকে ব্যস্ত রাখা যায় অন্য কাজে মনোনিবেশ করা যায় তখন মাসিকের চিন্তা ভুলে ঙ্গিয়ে মেজাজ স্বাভাবিক থাকে না হয় না বীর্যপাত হলো ছেলেদের দেহে শুক্রাণু তৈরি হওয়ার লক্ষণ মেয়েদের ক্ষেত্রে অনুরূপ লক্ষণ হল ঋতুস্রাব হওয়া তবে বীর্যপাতের নির্দিষ্ট কোন সময়কাল না থাকলেও মেয়েদের ঋতুস্রাব নির্দিষ্ট সময় পর পর হয়ে থাকে না স্বপ্নদোষ এড়ানোর কোন উপায় নেই স্বপ্নদোষের ফলে শারীরিক কোন ক্ষতিসাধন হয় না এটি সর্বদা ঘুমের মধ্যে হয়ে থাকে এবং আপনার প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে উঠার চিহ্ন পুরুষের লিঙ্গে অনেক শিরা আছে এসব শিরার মধ্যে যদি অনেক বেশি রক্ত প্রবেশ করে তবে লিঙ্গ শক্ত হয়ে খাড়া হয়ে উঠে ঘুমন্ত অবস্থায় একজন পুরুষ অনেক প্রশান্ত থাকে সেজন্য রক্ত খুব সহজে লিঙ্গের শিরার মধ্যে প্রবেশ করতে পারে এবং লিঙ্গকে শক্ত করে খাড়া করে দেয় এ ছাড়া সকালে ঘুম থেকে ওঠার সময় পুরুষাঙ্গের উত্থান মূত্রথলির খুব পূর্ণ হয়ে যাওয়ার কারণেও হতে পারে জলের মত সেই আস্তরন জরায়ুর ভিতরে তৈরী হয় নিষিক্ত ডিম্বাণু যখন জরায়ুর ভিতরে স্থাপিত হয় তখন তার চার পাশে বিভিন্ন অ্যাামিনো এসিড ও তরল পদার্থ জমা হয়ে সেই জলের আস্তরন তৈরি করে বয়ঃসন্ধি কাল খুবই সংক্ষিপ্ত সময় এর মেয়াদ মাত্র চার থেকে পাঁচ বছর ৫ম থেকে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়াদের জীবনে এ কালটা অতিক্রম করে এ সময় ছেলেমেয়েদের যৌনতার বিকাশ ঘটে মেয়েদের পরিবর্তন শুরু হয় ছেলেদের চেয়ে এক বছর আগে বয়ঃসন্ধি কাল খুবই সংক্ষিপ্ত সময় এর মেয়াদ মাত্র চার থেকে পাঁচ বছর ৫ম থেকে ৭ম শ্রেণিতে পড়ুয়াদের জীবনে এ কালটা অতিক্রম করে এ সময় ছেলেমেয়েদের যৌনতার বিকাশ ঘটে মেয়েদের পরিবর্তন শুরু হয় ছেলেদের চেয়ে এক বছর আগে শৈশব থেকে কৈশোরে উত্তরণের পথে ব্যক্তির শারীরিক কিছু পরিবর্তন ঘটে এ সময় মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে গ্রোথ হরমোন নামে একটি রাসায়নিক যৌগ নিঃসরণ হয় এই হরমোনের প্রভাবে অণ্ডকোষ ও ডিম্বাশয়ে পরিবর্তন হয় এবং এরা টেস্টোস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন তৈরি করে এদের প্রভাবে চুল ত্বক হাড় বিভিন্ন অঙ্গ ও মাংসপেশিতে পরিবর্তন দেখা দেয়এ সময় ব্যক্তিজীবনটা থাকে বড়ই আবেগপ্রবণ কারণ শরীর খুব দ্রুত বদলাতে থাকে তাল সামলানো কঠিন হয় বা প্রায়ই পারা যায় নাহরমোন বৃদ্ধির কারণে মেয়েদের শরীর থেকে মেয়েলী গন্ধ এবং ছেলেদের শরীর থেকে পুরুষালী গন্ধ প্রকটভাবে ছড়াতে থাকে উভয়ের নরম চামড়া ভেদ করে বিশেষ করে মুখে ফুসকুড়ি বা ব্রণ উঠতে থাকে বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয় আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং বড়দের সাথে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহনের কাজে অংশগ্রহন করতে চায় পুরো বয়ঃসন্ধি কালেই এ পরিবর্তন ঘটতে থাকে এ সময় ব্যক্তিজীবনটা থাকে বড়ই আবেগপ্রবণ কারণ শরীর খুব দ্রুত বদলাতে থাকে তাল সামলানো কঠিন হয় বা প্রায়ই পারা যায় নাহরমোন বৃদ্ধির কারণে মেয়েদের শরীর থেকে মেয়েলী গন্ধ এবং ছেলেদের শরীর থেকে পুরুষালী গন্ধ প্রকটভাবে ছড়াতে থাকে উভয়ের নরম চামড়া ভেদ করে বিশেষ করে মুখে ফুসকুড়ি বা ব্রণ উঠতে থাকে বিপরীত লিঙ্গের মানুষের প্রতি আকর্ষণ সৃষ্টি হয় আত্মবিশ্বাস বৃদ্ধি পায় এবং বড়দের সাথে বিভিন্ন সিদ্ধান্ত গ্রহনের কাজে অংশগ্রহন করতে চায় পুরো বয়ঃসন্ধি কালেই এ পরিবর্তন ঘটতে থাকে দশ থেকে চৌদ্দ বছর বয়সকালেই দৈহিকভাবে ছেলেরা সন্তান জন্মদান এবং মেয়েরা গর্ভধারণ করতে সক্ষম হলেও পূর্ণাঙ্গ নর ও নারী কিংবা মা ও বাবা হওয়ার মতো সম্ভাবনা শক্তি তখনও সুপ্ত থাকে দৈহিক পরিপুষ্টি মানসিক প্রস্তুতি আর্থিক ও সামাজিক পরিবেশপরিস্থিতি কোনটাই এ সময় ব্যক্তির অনুকূল থাকে না অথচ দেহে ও মনে একটা তাড়না প্রতিনিয়ত অনুভূত হয় তাছাড়াও এই বয়সে একজন মেয়ের দেহ সন্তান বহনের জন্য সম্পূর্ণভাবে প্রস্তুত থাকে না তাদের জরায়ুপ্রাচীর ও আভ্যন্তরীন জননাঙ্গ দুর্বল হয় শ্রোনীদেশের হাড় পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রশস্ত থাকে না যার ফলে সন্তান বহন ও প্রসবের সময় নানা রকম জটিলতার সম্মুখীন হতে হয় কখনো কখনো গর্ভপাতও করতে হতে পারে এসময় প্রত্যেক ছেলেমেয়ের মনে অনেক রকম প্রশ্ন ও আশংকা জাগে ভয়ভীতি সঞ্চারিত হয় উদ্বেগ কাজ করেকেন করে তার কারণ সে নিজেও বোঝে না বা কাউকে সহজে বুঝিয়েও বলতে পারে না অজানাকে জানতে চায় অচেনাকে চিনতে চায় নতুনের প্রতি কৌতুহল বাড়ে যিনি তাকে বুঝতে চান এবং তার প্রতি সহানুভূতি দেখান তার কাছেই সে আব্দার করে প্রশ্ন করে বা জানতে চায় তাই এসময় মাবাবা বড় ভাইবোন ও শিক্ষকশিক্ষিকাকে তাদের প্রতি সহজ ও সহনশীল হওয়া খুবই প্রয়োজন কিশোর বয়সীদের এসব সমস্যার যদি সঠিক ও বাস্তব সমাধান মাবাবা বড় ভাইবোন শিক্ষকশিক্ষিকা এবং চিকিৎসক/পরামর্শকের কাছ থেকে না পায় তবে তারা কুসংস্কার ধর্মান্ধতা ভুল তথ্য এবং বিকৃত চিন্তাভাবনার শিকার হয় অনেকেই মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হতে পারে এমনকি মানসিক বিষণ্ণতা রোগেও আক্রান্ত হয়ে যেতে পারে যার প্রতিফলন ঘটে বিভিন্ন কিশোর অপরাধের মাধ্যমেযেমন ধূমপান মদ্যপান মাদক সেবন এইচআইভি সংক্রমণ পুষ্টিহীনতা যৌনবিকৃতি এবং সহিংসতা যা প্রতিদিন পত্রপত্রিকায় আমরা দেখতে পাই বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বা ডাব্লিউএইচওর সাম্প্রতিক এক প্রতিবেদনে বলা হয় বর্তমান বিশ্বে ১০ থেকে ১৯ বছর বয়সিদের বড় একটা অংশের অসুস্থতার অন্যতম কারণ বিষণ্ণতা অনেক কিশোরকিশোরীই বয়ঃসন্ধিকালে শুরু হওয়া মানসিক অসুস্থতা বয়ে বেড়ায় জীবনভর সারা বিশ্বের মানসিকভাবে অসুস্থ প্রাপ্তবয়স্কদের অন্তত অর্ধেকের মাঝে এই রোগের লক্ষণ দেখা যায় বয়স ১৪ পূর্ণ হওয়ার আগে মানসিক স্বাস্থ্যের ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে সচেতনতা প্রয়োজন সারা বিশ্বে এখনো সন্তান জন্ম দেয়ার সময়ই সব চেয়ে বেশি কিশোরী মারা যায় নানা কারণে আত্মহননের পথও বেছে নেয় কিশোরকিশোরীরা ডাব্লিউএইচওর প্রতিবেদন অনুযায়ী বয়ঃসন্ধিকালে সবচেয়ে বেশি মৃত্যুর কারণ প্রসবকালীন জটিলতা আর তারপরই রয়েছে আত্মহত্যা বয়ঃসন্ধি কালে মাবাবা এবং শিক্ষকশিক্ষিকার করনীয় এই উঠতি বয়সের ছেলেমেয়ে/ছাত্রছাত্রীদের প্রতি বিশেষ যত্নবান হওয়া তাদেরকে পুষ্টিকর খাবারের পরিমাণ বাড়িয়ে দেয়া তাদের দেহে যে পরিবর্তন হচ্ছে বা হবে সে সম্পর্কে জানান দেয়া তাদের সঙ্গে সহজসাবলীল বন্ধুভাবাপন্ন ও সহনশীল আচরণ করা তাদের চাহিদার প্রতি গুরুত্ব দেয়া এবং আন্তরিক ও যত্নবান হওয়া তাদেরকে মুক্ত পরিবেশে চলাফেরা করার সুযোগ দেয়া খেলাধুলা সাহিত্যকর্ম বিতর্ক আবৃতি অভিনয় নাচ গানবাদ্য ছবি আঁকা ভাস্কর্য তৈরি প্রভৃতি শিল্পকর্মে অংশগ্রহণ এবং নৈপুণ্য অর্জনে উৎসাহ দেয়া এবং সাহায্য করা এ জন্য পরিবারে স্কুলে এবং কমিউনিটিতে সাধ্যমতো খেলাধুলা সাহিত্য ও সাংস্কৃতিক কর্মকান্ডের ব্যবস্থা থাকা দরকার শৈশব থেকে কৈশোরে উত্তরণের পথে ব্যক্তির শারীরিক কিছু পরিবর্তন ঘটে এ সময় মস্তিষ্কের হাইপোথ্যালামাস ও পিটুইটারি গ্রন্থি থেকে গ্রোথ হরমোন নামে একটি রাসায়নিক যৌগ নিঃসরণ হয় এই হরমোনের প্রভাবে অণ্ডকোষ ও ডিম্বাশয়ে পরিবর্তন হয় এবং এরা টেস্টোস্টেরন ও ইস্ট্রোজেন নামক হরমোন তৈরি করে এদের প্রভাবে চুল ত্বক হাড় বিভিন্ন অঙ্গ ও মাংসপেশিতে পরিবর্তন দেখা দেয় একে বলে বয়ঃসন্ধি বা বয়ঃপ্রাপ্তি বয়ঃসন্ধি শুরু হওয়ার কোন নির্দিষ্ট বয়স নেই ভিন্ন ভিন্ন শিশুর এটি ভিন্ন ভিন্ন সময়ে শুরু হয় এবং তারা বিভিন্ন গতিতে বেড়ে ওঠে বয়ঃসন্ধি শুরু হয় ৮১৪ বছর বয়সের মধ্যে এবং এর মেয়াদ খুব সংক্ষিপ্ত মাত্র চার থেকে পাঁচ বছর এ সময় ছেলেমেয়েদের যৌনতার বিকাশ ঘটে মেয়েদের পরিবর্তন শুরু হয় ছেলেদের চেয়ে এক বছর আগে বয়সন্ধিক্ষনে বিভিন্ন ধরণের উত্তেজনা দেখা দেয় এই সময় শরীরে পরিপক্বতা চলে আসে কিশোর বা কিশোরীরা তাদের এইরূপ পরিবর্তনের সাথে অপ্রস্তুত থাকে এইসব পরিবর্তনে তারা ভয় পেয়ে যায় বয়স বৃদ্ধির সাথে সাথে সবার মাঝেই কিছু ধরণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় এটা জানা তাদের নিকট সুবিধাজনক পরিবারের অন্যান্য ব্যাক্তিবর্গ যেমন বাবামা শিক্ষকশিক্ষিকা বড় ভাইবোন এছাড়াও বন্ধুবান্ধব বয়ঃসন্ধি সম্পর্কে কিছুটা সাধারণ ধারণা দিতে পারে বয়ঃসন্ধিকালে ভবিষ্যৎ কাজের জন্য একজনের শরীর ও মন গঠিত হয় যেমন গাড়ি চালানো সন্তান জন্মদান চাকুরী করা ভালবাসার সম্পর্ক গড়ে তুলা ইত্যাদি বয়ঃসন্ধি বলতে বুঝায় কীভাবে একজন অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ে একজন পরিপূর্ণ নারীতে পরিণত হয় সকল মেয়েদেরকেই এই বয়স পার করতে হয় এবং সকল মেয়েদেরই এই সময়ের কিছু অভিজ্ঞতা থাকে যা তারা আলোচনা করে থাকে কিছু হরমনের প্রভাবে এই সময়ের সব ধরনের পরিবর্তন নিয়ন্ত্রিত হয় হাত পায়ের লোম বড় হয় এবং বগল ও শ্রোণিদেশে চুল গজায় (১) বেশীরভাগ কিশোরীই যৌন বিষয়াবলী এবং তাদের শরীর সম্পর্কে ভাল ভাবে জানে না তাই মাসিক না হলে এবং গর্ভধারণের অন্যান্য লক্ষণগুলো দেখা দিলে তারা পরিবর্তনটা বুঝতে পারেনা (২) কিশোরী মেয়েরা গর্ভবতী হয়েছে বুঝতে পারলে মা হবার জন্য প্রস্তুত না থাকার কারনে বা স্বামী অথবা প্রেমিকের চাপে এবরশন করার চেষ্টা করে (৩) কিশোরী মায়েরা সুযোগ বা সচেতনতার অভাবে অথবা ভয়ের কারনে গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ নেন না এর ফলে তাদের প্রসবকালীন জটিলতা দেখা দেয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে (৪) কিশোরী মায়েদের গর্ভাবস্থায় উচ্চ রক্তচাপ এবং গর্ভকালীন ডায়াবেটিসে ভোগার সম্ভাবনা বেশি থাকে প্রস্রাবের সাথে প্রোটিন বেরিয়ে আসে মায়ের মুখ ও শরীর ফুলে যায় খিঁচুনি দেখা দেয় এমনকি তার কোন অঙ্গও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে (৫) কম বয়সী মায়েরা অপুষ্টিতে ভুগেন বলেও বাচ্চার ওজন কম হয় এবং অনেক ধরনের জটিলতায় ভোগার সম্ভাবনা থাকে (৬) শরীর বিষয়ে অজ্ঞতার কারনে বিভিন্ন যৌনবাহিত রোগে হতে পারে এবং মায়েদের শরীর থেকে সন্তানের দেহে এইডস হেপাটাইটিস বি এবং ক্ল্যামিডিয়া এর মত অসুখ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে (৭) কিশোরী মায়েদের প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতা ভোগার সম্ভাবনা বেশি থাকে বয়ঃপ্রাপ্ত বা সাবালক হওয়ার লক্ষণগুলো (যেমন মেয়েদের ক্ষেত্রে স্তন বেড়ে ওঠা ছেলেদের ক্ষেত্রে অণ্ডকোষ বড় হয়ে যাওয়া এবং যৌনাঙ্গের চারপাশে চুল গজানো) যদি মেয়েদের বয়স ছয় থেকে আট আর ছেলেদের বয়স নয় বছর হওয়ার আগে তাদের মধ্যে দেখা যায় তাহলে সেটিকে অস্বাভাবিক বলে বিবেচনা করা হয় বয়ঃপ্রাপ্তি লাভের প্রক্রিয়াটি GPR54 নামক জিনটি শুরু করে এটি আমাদের মস্তিস্কে একটি সঙ্কেত পাঠায় যার ফলে একটি চেইন রিঅ্যাকশন শুরু হয় এবং শরীরে বিভিন্ন হরমোন নিঃসরণ শুরু হয় মস্তিস্কের কোন সমস্যা (যেমন টিউমার) মস্তিষ্কে আঘাত জনিত কারনে মস্তিস্কের কোন সংক্রমণ (যেমন মেনিনজাইটিস) ডিম্বাশয় বা থায়রয়েড গ্রন্থির কোন সমস্যার কারনে কারো ক্ষেত্রে বংশগত ভাবেই এমনটি হওয়ার প্রবণতা থাকলে বেশিরভাগ সময়ই মেয়েদের পিউবার্টি আগে আগে শুরু হওয়ার কোন নির্দিষ্ট কারন জানা যায় না ছেলেদের মধ্যে স্বাভাবিক বয়সের আগে পিউবার্টি শুরু হওয়াটা কম দেখা যায় এবং প্রায়ই এর কোন নির্দিষ্ট স্বাস্থ্যগত কারন থাকে অনেক কারনেই বয়ঃসন্ধি বিলম্বিত হতে পারে বংশগত কারনে (আপনার বংশেই হয়ত সাবালকত্ব লাভের প্রক্রিয়াটি দেরিতে শুরু হয়) ডায়বেটিস বা কিডনির সমস্যায় ভুগলে খাওয়াদাওয়ার অনিয়ম বা দীর্ঘদিন সিস্টিক ফিব্রসিস এর মত অসুখ বা অপুষ্টিতে ভুগলে অতিরিক্ত ব্যায়াম করলে ডিম্বাশয়ের উপর সিস্ট হলে টিউমার বা অন্য কোন কারনে কোন গ্রন্থি ক্ষতিগ্রস্ত হলে হরমোনের সমস্যার কারনে এন্ড্রোজেন ইনসেন্সিটিভিটি সিন্ড্রোমের মত কোন জেনেটিক সমস্যার কারনে এন্ড্রোজেন ইনসেন্সিটিভিটি সিন্ড্রোম খুব বিরল একটি সমস্যা যার কারনে ছেলেদের শরীর যৌন হরমোনগুলো দ্বারা প্রভাবিত হয় না দীর্ঘদিন ধরে ধরে অসুখে ভোগার মত কোন কারন না থাকলে টিউমার বা হরমোন ও গ্রন্থিসমূহের কোন সমস্যা আছে কিনা তা জানার জন্য কিছু পরীক্ষা করতে হতে পারে অধিকাংশ সময়ই যে অন্তর্নিহিত সমস্যাটির কারনে সাবালক হতে দেরি হচ্ছে সেটির চিকিৎসা করলেই পিউবার্টির প্রক্রিয়াটি নিজে থেকে শুরু হয়ে যায় ছেলেদের অণ্ডকোষের তৈরি করা টেসটোস্টেরন এবং মেয়েদের ডিম্বাশয় থেকে উৎপন্ন এস্ট্রোজেন হরমনের প্রভাবে বয়ঃসন্ধি শুরু হয় বয়ঃসন্ধির মাধ্যমে সবাই প্রজনন ক্ষমতা লাভ করে পুরুষাঙ্গ এবং অণ্ডকোষের আকার বৃদ্ধি পায় যৌনাঙ্গের উপর ও বগলে চুল গজানো শুরু হবে আপনার চেহারায় ও পিঠে ব্রণ উঠতে পারে গলার স্বর পরিবর্তিত হয়ে যাবে স্বপ্নদোষ শুরু হবে যাতে ঘুমের মধ্যে নিজের অজান্তে বীর্যপাত ঘটে এবং শেষের দিকে দাড়িমোচ গজানো শুরু হবে জরায়ু বড় হতে শুরু করে যৌনাঙ্গের উপর ও বগলে চুল গজানো শুরু হবে আপনার চেহারায় ও পিঠে ব্রণ উঠতে পারে স্তন ধীরে ধীরে আরও পূর্ণ আকৃতি লাভ করতে থাকে ডিম্বকোষ তৈরি ও মাসিক ঋতুস্রাব শুরু হয় দেহের উচ্চতা বাড়েমাংসপেশী দৃঢ় হতে থাকেলিঙ্গ বড় ও মোটা হয় অণ্ডকোষ ঝুলে যায় ও বড় হয় মুখে গোঁফদাড়ি বগলে বুকে ও তলপেটে লোম এবং লিঙ্গের গোড়ায় যৌনকেশ গজায় গলার স্বর অল্প সময়ের জন্য ভেঙে যায় ও ভারী হয় মুখে তেল বাড়ে ও ব্রণ হয়দেহে শুক্রকোষ তৈরি হয়যৌন কামনা বাড়ে ও বীর্যপাত বা 'স্বপ্নদোষ' শুরু হয় সন্তান জন্মদানে সক্ষম হয় দেহের উচ্চতা বাড়ে কণ্ঠস্বর ভারী বা উঁচু হতে থাকেমুখে তেল বাড়ে ও ব্রণ হয়স্তন ও নিতম্ব আকারে বাড়ে ও ভারী হয় বগলে লোম গজায় মুখেও সামান্য লোম গজায়যোনিপথের চারদিকে যৌনকেশ গজায়দেহে ডিম্বকোষ তৈরি ও মাসিক ঋতুস্রাব শুরু হয় যৌনসঙ্গমে ও গর্ভধারণে সক্ষম হয় হস্তমৈথুন করলে কিছু কিছু পুরুষের স্বপ্নদোষ হ্রাস পায় কিন্তু এটা করা আরো ক্ষতিকর একসময় হস্তমৈথুন করার অভ্যাসটাই একজন পুরুষের যৌন জীবন বিপর্যস্থ করে তুলে অতিরিক্ত হ্স্তমৈথুনের ফলেও কিছু শারীরিক মানসিক এবং হরমোনজনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে যা এই ধরনের স্বপ্নদোষকে পুরুষের স্থায়ী পুরুষত্বহীনতা এবং লিঙ্গত্থানহীনতার মত মারাত্মক জটিল রোগের সৃষ্টি করতে পারে পুরুষের শরীরে বীর্য প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীতে শারীরিক মিলন বা হস্তমৈথুনের সময় চরম তৃপ্তির পর্যায়ে পুরুষের শরীর থেকে নির্গত হয়ে থাকে কিন্তু অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে পুরুষের টেষ্টষ্টোরেন হরমোন অধিক পরিমান অর্থাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত বীর্য তৈরি করে এবং একই সাথে স্পিংটার পেশী এবং স্নায়ু দুর্বল করে দেয় যার ফলে বীর্য যৌনতন্ত্রে আটকে যায় পরবর্তীতে আটকে থাকা বীর্য প্রস্রাবের সাথে কিংবা কোন রকম খারাপ স্বপ্ন ছাড়া ঘুমের মাঝে শুধুমাত্র বিছানার ঘর্ষনের ফলে নিজ থেকে বেরিয়ে যায় বীর্য আটকে থাকার কারনে এবং তা থেকে স্বপ্নদেষের সৃষ্টির কারনে ক্রমশ বেশ কিছু সম্যসার জন্ম দেয় যেমন শারীরিক দুর্বলতা বৃদ্ধি লিঙ্গত্থান সমস্যা বীর্যের পরিমান হ্রাস শুক্রানুর পরিমান কমে যাওয়া হাটু মাজা এবং শরীরের অন্যান্য জোড়ার ব্যাথা অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব অনুভুতি ইত্যাদি হস্তমৈথুন করলে কিছু কিছু পুরুষের স্বপ্নদোষ হ্রাস পায় কিন্তু এটা করা আরো ক্ষতিকর একসময় হস্তমৈথুন করার অভ্যাসটাই একজন পুরুষের যৌন জীবন বিপর্যস্থ করে তুলে অতিরিক্ত হ্স্তমৈথুনের ফলেও কিছু শারীরিক মানসিক এবং হরমোনজনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে যা এই ধরনের স্বপ্নদোষকে পুরুষের স্থায়ী পুরুষত্বহীনতা এবং লিঙ্গত্থানহীনতার মত মারাত্মক জটিল রোগের সৃষ্টি করতে পারে পুরুষের শরীরে বীর্য প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীতে শারীরিক মিলন বা হস্তমৈথুনের সময় চরম তৃপ্তির পর্যায়ে পুরুষের শরীর থেকে নির্গত হয়ে থাকে কিন্তু অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে পুরুষের টেষ্টষ্টোরেন হরমোন অধিক পরিমান অর্থাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত বীর্য তৈরি করে এবং একই সাথে স্পিংটার পেশী এবং স্নায়ু দুর্বল করে দেয় যার ফলে বীর্য যৌনতন্ত্রে আটকে যায় পরবর্তীতে আটকে থাকা বীর্য প্রস্রাবের সাথে কিংবা কোন রকম খারাপ স্বপ্ন ছাড়া ঘুমের মাঝে শুধুমাত্র বিছানার ঘর্ষনের ফলে নিজ থেকে বেরিয়ে যায় বীর্য আটকে থাকার কারনে এবং তা থেকে স্বপ্নদেষের সৃষ্টির কারনে ক্রমশ বেশ কিছু সম্যসার জন্ম দেয় যেমন শারীরিক দুর্বলতা বৃদ্ধি লিঙ্গত্থান সমস্যা বীর্যের পরিমান হ্রাস শুক্রানুর পরিমান কমে যাওয়া হাটু মাজা এবং শরীরের অন্যান্য জোড়ার ব্যাথা অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব অনুভুতি ইত্যাদি হস্তমৈথুন করলে কিছু কিছু পুরুষের স্বপ্নদোষ হ্রাস পায় কিন্তু এটা করা আরো ক্ষতিকর একসময় হস্তমৈথুন করার অভ্যাসটাই একজন পুরুষের যৌন জীবন বিপর্যস্থ করে তুলে অতিরিক্ত হ্স্তমৈথুনের ফলেও কিছু শারীরিক মানসিক এবং হরমোনজনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে যা এই ধরনের স্বপ্নদোষকে পুরুষের স্থায়ী পুরুষত্বহীনতা এবং লিঙ্গত্থানহীনতার মত মারাত্মক জটিল রোগের সৃষ্টি করতে পারে পুরুষের শরীরে বীর্য প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীতে শারীরিক মিলন বা হস্তমৈথুনের সময় চরম তৃপ্তির পর্যায়ে পুরুষের শরীর থেকে নির্গত হয়ে থাকে কিন্তু অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে পুরুষের টেষ্টষ্টোরেন হরমোন অধিক পরিমান অর্থাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত বীর্য তৈরি করে এবং একই সাথে স্পিংটার পেশী এবং স্নায়ু দুর্বল করে দেয় যার ফলে বীর্য যৌনতন্ত্রে আটকে যায় পরবর্তীতে আটকে থাকা বীর্য প্রস্রাবের সাথে কিংবা কোন রকম খারাপ স্বপ্ন ছাড়া ঘুমের মাঝে শুধুমাত্র বিছানার ঘর্ষনের ফলে নিজ থেকে বেরিয়ে যায় বীর্য আটকে থাকার কারনে এবং তা থেকে স্বপ্নদেষের সৃষ্টির কারনে ক্রমশ বেশ কিছু সম্যসার জন্ম দেয় যেমন শারীরিক দুর্বলতা বৃদ্ধি লিঙ্গত্থান সমস্যা বীর্যের পরিমান হ্রাস শুক্রানুর পরিমান কমে যাওয়া হাটু মাজা এবং শরীরের অন্যান্য জোড়ার ব্যাথা অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব অনুভুতি ইত্যাদি হস্তমৈথুন করলে কিছু কিছু পুরুষের স্বপ্নদোষ হ্রাস পায় কিন্তু এটা করা আরো ক্ষতিকর একসময় হস্তমৈথুন করার অভ্যাসটাই একজন পুরুষের যৌন জীবন বিপর্যস্থ করে তুলে অতিরিক্ত হ্স্তমৈথুনের ফলেও কিছু শারীরিক মানসিক এবং হরমোনজনিত সমস্যা সৃষ্টি হয়ে থাকে যা এই ধরনের স্বপ্নদোষকে পুরুষের স্থায়ী পুরুষত্বহীনতা এবং লিঙ্গত্থানহীনতার মত মারাত্মক জটিল রোগের সৃষ্টি করতে পারে পুরুষের শরীরে বীর্য প্রাকৃতিক ভাবে সৃষ্টি হয় যা পরবর্তীতে শারীরিক মিলন বা হস্তমৈথুনের সময় চরম তৃপ্তির পর্যায়ে পুরুষের শরীর থেকে নির্গত হয়ে থাকে কিন্তু অতিরিক্ত হস্তমৈথুনের ফলে পুরুষের টেষ্টষ্টোরেন হরমোন অধিক পরিমান অর্থাৎ প্রয়োজনের অতিরিক্ত বীর্য তৈরি করে এবং একই সাথে স্পিংটার পেশী এবং স্নায়ু দুর্বল করে দেয় যার ফলে বীর্য যৌনতন্ত্রে আটকে যায় পরবর্তীতে আটকে থাকা বীর্য প্রস্রাবের সাথে কিংবা কোন রকম খারাপ স্বপ্ন ছাড়া ঘুমের মাঝে শুধুমাত্র বিছানার ঘর্ষনের ফলে নিজ থেকে বেরিয়ে যায় বীর্য আটকে থাকার কারনে এবং তা থেকে স্বপ্নদেষের সৃষ্টির কারনে ক্রমশ বেশ কিছু সম্যসার জন্ম দেয় যেমন শারীরিক দুর্বলতা বৃদ্ধি লিঙ্গত্থান সমস্যা বীর্যের পরিমান হ্রাস শুক্রানুর পরিমান কমে যাওয়া হাটু মাজা এবং শরীরের অন্যান্য জোড়ার ব্যাথা অতিরিক্ত ঘুম ঘুম ভাব অনুভুতি ইত্যাদি না ক্ষতি অতিদ্রুত পূরণ হয় আপনি নীচে উল্লেখিত বিষয়গুলো চেষ্টা করতে পারেন— যৌন আচরণ সম্পর্কে চিন্তা পরিত্যাগ করা স্বাস্থ্যের যত্ন নেয়া এবং ব্যায়াম করা পর্নগ্রাফী এড়িয়ে চলা নতুন কোন শখের দিকে আগ্রহী হওয়া বন্ধুত্ব পূর্ণ সুস্থ সুন্দর সম্পর্ক সৃষ্টি করা ধর্মীও চেতনা চর্চা করা বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের মন মেজাজ খুব ওঠানামা করে এ সময় শরীরের নিঃসৃত যৌন হরমনগুলো ছেলেমেয়েদের মন মেজাজের ওপর প্রভাব বিস্তার করে মনে হয়তো দারুণ খুশি কিন্তু একটু পরেই ঘন বিষাদ বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের মন মেজাজ খুব ওঠানামা করে এ সময় শরীরের নিঃসৃত যৌন হরমনগুলো ছেলেমেয়েদের মন মেজাজের ওপর প্রভাব বিস্তার করে মনে হয়তো দারুণ খুশি কিন্তু একটু পরেই ঘন বিষাদ বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের মন মেজাজ খুব ওঠানামা করে এ সময় শরীরের নিঃসৃত যৌন হরমনগুলো ছেলেমেয়েদের মন মেজাজের ওপর প্রভাব বিস্তার করে মনে হয়তো দারুণ খুশি কিন্তু একটু পরেই ঘন বিষাদ বয়ঃসন্ধিকালে ছেলেমেয়েদের মন মেজাজ খুব ওঠানামা করে এ সময় শরীরের নিঃসৃত যৌন হরমনগুলো ছেলেমেয়েদের মন মেজাজের ওপর প্রভাব বিস্তার করে মনে হয়তো দারুণ খুশি কিন্তু একটু পরেই ঘন বিষাদ বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের নিঃসৃত যৌন হরমনগুলো ছেলেমেয়েদের মন মেজাজের ওপর প্রভাব বিস্তার করে তাদের নিজেদের রাজারাণী ভাবতে ভালো লাগে তাদের আচারআচরণে অনেক অভিভাবক বিব্রতবোধ করেন কাউকে না মানার মনোভাব তাদের মধ্যে প্রচন্ডভাবে জেগে ওঠে এ সময় বাবামা কিংবা অন্য অভিভাবকদের সাথে তাদের বনিবনা হয় না একটা দুর্বিনীত ভাব সবসময় উত্তেজিত করে রাখে নেতিবাচক চিন্তাচেতনা তাদের প্রভাবিত করে পারিবারিক পরিবেশ স্কুলকলেজের পরিবেশ বন্ধুবান্ধবের সাহচর্য এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক উপাদান যেমন টেলিভিশন সিনেমা নাটক তাদের মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে তাদের মনে এক প্রকার লোভলালসা বাসা বাঁধে বয়ঃসন্ধিকালে শরীরের নিঃসৃত যৌন হরমনগুলো ছেলেমেয়েদের মন মেজাজের ওপর প্রভাব বিস্তার করে তাদের নিজেদের রাজারাণী ভাবতে ভালো লাগে তাদের আচারআচরণে অনেক অভিভাবক বিব্রতবোধ করেন কাউকে না মানার মনোভাব তাদের মধ্যে প্রচভাবে জেগে ওঠে এ সময় বাবামা কিংবা অন্য অভিভাবকদের সাথে তাদের বনিবনা হয় না একটা দুর্বিনীত ভাব সবসময় উত্তেজিত করে রাখে নেতিবাচক চিন্তাচেতনা তাদের প্রভাবিত করে পারিবারিক পরিবেশ স্কুলকলেজের পরিবেশ বন্ধুবান্ধবের সাহচর্য এবং অন্যান্য সাংস্কৃতিক উপাদান যেমন টেলিভিশন সিনেমা নাটক তাদের মনে ব্যাপক প্রভাব বিস্তার করে তাদের মনে এক প্রকার লোভলালসা বাসা বাঁধে সন্তানের মূল অভিভাবক পরিবার পরিবার থেকে যদি সন্তানকে সুশিক্ষা দেয়া হয় ধর্মীয় অনুশাসন শিক্ষা দেয়া হয় নৈতিক শিক্ষার পরিবেশ দেয়া হয় তাহলে বয়ঃসন্ধিকালে বিপথগামী হওয়ার আশঙ্কা অনেকের অনেক কম থাকে একটি মুসলিম পরিবারে যদি ইসলামী পরিবেশ বজায় থাকে এবং সন্তানদের কুরআনহাদিস চর্চায় অভ্যস্ত করা হয় তাহলে সে পরিবারের সন্তান অবশ্যই ভালো হবে আমরা সমাজে নৈতিকতার বিষয়ে অনেককে কথা বলতে দেখি কিন্তু নৈতিকতার মূল উৎস ধর্মকে অস্বীকার করি কিংবা ধর্মীয় চেতনার বিরোধিতা করি বয়ঃসন্ধিকালে শারীরিক পরিবর্তনের সাথে সাথে মানসিক পরিবর্তনও ঘটে এই সময় মাবাবার সাথে কথোপকথনের ধরণ ও বিষয়ও পরিবর্তিত হয় নিজেরকে প্রাপ্তবয়স্ক ভাবার কারণে অনেক সময় পিতামাতার আদেশ নিষেধকে উন্মত্ততা মনে হয় অনেকের কাছে বয়ঃসন্ধি কালটা খুবই কঠিন একটা সময় মনে হয় আপনাকে শরীরের বিভিন্ন পরিবর্তন এবং এর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলোর (যেমনঃ ব্রন এবং দুর্গন্ধ) সাথে খাপ খাওয়ানোর চেষ্টা করতে হয় কিন্তু তা করার মত যথেষ্ট আত্মসচেতনতা তখনও গড়ে ওঠে না বয়ঃসন্ধি কাল খুব আনন্দের সময়ও হতে পারে কারন এসময় আপনার নতুন ধরনের আবেগঅনুভূতি তৈরি হয় তবে আবেগের দ্রুত পরিবর্তনের ফলে নিম্নোক্ত প্রভাবগুলো দেখা যেতে পারেঃ(১) কোন কারন ছাড়া মুড বদলানো (২) নিজের সম্বন্ধে খুব খাটো ধারনা তৈরি হওয়া (৩) আক্রমনাত্মক হয়ে ওঠা (৪) বিষণ্ণতা এই অনুভূতিগুলো বয়ঃসন্ধিকালে বেড়ে ওঠার সময় খুবই স্বাভাবিক তবে এগুলো আপনার জীবনকে খুব বেশি প্রভাবিত করলে আপনি আপনার খুব কাছের কারো সাথে (যেমন বন্ধু বা আত্মীয়) কথা বলতে পারেন অথবা ডাক্তারের কাছে যেতে পারেন স্বপ্নদোষ হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা কিন্তু এটি যখন অতিরিক্ত পরিমানে হতে থাকে তখন কিন্তু রোগেরই পূর্বাবাস দেয় রাতে অতিরিক্ত ভোজন বা গুরুপাক দ্রবাদি ভোজন অথবা তীব্র কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে অনেকেরই অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হতে পারে শোবার পূর্বে ঠাণ্ডা পানি পান করুণ লিঙ্গ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন এবং ঢিলা পোশাক পরে ঘুমাবেন প্রস্রাব পায়খানার বেগ নিয়ে ঘুমাবেন না পর্ণগ্রাফি অশ্লীল চিন্তাভাবনা ও অন্যান্য বদভ্যাস ত্যাগ করুণ বৈবাহিক যৌন সহবাসের মাধ্যমে স্বপ্নদোষ কমিয়ে আনা সম্ভব স্বপ্নদোষ হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা কিন্তু এটি যখন অতিরিক্ত পরিমানে হতে থাকে তখন কিন্তু রোগেরই পূর্বাবাস দেয় রাতে অতিরিক্ত ভোজন বা গুরুপাক দ্রবাদি ভোজন অথবা তীব্র কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে অনেকেরই অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হতে পারে শোবার পূর্বে ঠাণ্ডা পানি পান করুণ লিঙ্গ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন এবং ঢিলা পোশাক পরে ঘুমাবেন প্রস্রাব পায়খানার বেগ নিয়ে ঘুমাবেন না পর্ণগ্রাফি অশ্লীল চিন্তাভাবনা ও অন্যান্য বদভ্যাস ত্যাগ করুণ বৈবাহিক যৌন সহবাসের মাধ্যমে স্বপ্নদোষ কমিয়ে আনা সম্ভব স্বপ্নদোষ হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা কিন্তু এটি যখন অতিরিক্ত পরিমানে হতে থাকে তখন কিন্তু রোগেরই পূর্বাবাস দেয় রাতে অতিরিক্ত ভোজন বা গুরুপাক দ্রবাদি ভোজন অথবা তীব্র কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে অনেকেরই অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হতে পারে শোবার পূর্বে ঠাণ্ডা পানি পান করুণ লিঙ্গ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন এবং ঢিলা পোশাক পরে ঘুমাবেন প্রস্রাব পায়খানার বেগ নিয়ে ঘুমাবেন না পর্ণগ্রাফি অশ্লীল চিন্তাভাবনা ও অন্যান্য বদভ্যাস ত্যাগ করুণ বৈবাহিক যৌন সহবাসের মাধ্যমে স্বপ্নদোষ কমিয়ে আনা সম্ভব স্বপ্নদোষ হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা কিন্তু এটি যখন অতিরিক্ত পরিমানে হতে থাকে তখন কিন্তু রোগেরই পূর্বাবাস দেয় রাতে অতিরিক্ত ভোজন বা গুরুপাক দ্রবাদি ভোজন অথবা তীব্র কোষ্ঠকাঠিন্যের কারণে অনেকেরই অতিরিক্ত স্বপ্নদোষ হতে পারে শোবার পূর্বে ঠাণ্ডা পানি পান করুণ লিঙ্গ ঠাণ্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে নিন এবং ঢিলা পোশাক পরে ঘুমাবেন প্রস্রাব পায়খানার বেগ নিয়ে ঘুমাবেন না পর্ণগ্রাফি অশ্লীল চিন্তাভাবনা ও অন্যান্য বদভ্যাস ত্যাগ করুণ বৈবাহিক যৌন সহবাসের মাধ্যমে স্বপ্নদোষ কমিয়ে আনা সম্ভব স্বপ্নদোষের হওয়ার সাথে যৌন উত্তেজক কোনো স্বপ্নের সম্পর্ক থাকতে পারে অথবা নাও থাকতে পারে আবার অনেক সময় পুরুষদের লিঙ্গ উত্থান ছাড়াই স্বপ্নদোষ ঘটে যেতে পারে স্বপ্নদোষের হওয়ার সাথে যৌন উত্তেজক কোনো স্বপ্নের সম্পর্ক থাকতে পারে অথবা নাও থাকতে পারে আবার অনেক সময় পুরুষদের লিঙ্গ উত্থান ছাড়াই স্বপ্নদোষ ঘটে যেতে পারে স্বপ্নদোষ হওয়াটা স্বাভাবিক ঘটনা কিন্তু এটি যখন অতিরিক্ত পরিমানে হতে থাকে তখন কিন্তু রোগেরই পূর্বাবাস দেয় আর সেই সময় স্বপ্নদোষের কারনে পুরুষের নানা প্রকার শারীরিক এবং মানসিক সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে বয়ঃসন্ধির সময় থেকে কিছু হরমনের প্রভাবে বীর্য উৎপাদন শুরু হয় বীর্য বেশি উৎপন্ন হলে বীর্যথলি পূর্ণ হয়ে গেলে স্বপ্নদোষ হয় বিবাহের পর ঠিক হয়ে যায় আবার অতিরিক্ত অশ্লীল চিন্তাভাবনা ও পর্ণগ্রাফি দেখার কারনে স্বপ্নদোষের সম্ভাবনা বেরে যায় কারো বছরে মাসে বা এমনকি সপ্তাহে ২১ দিন স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে স্বপ্নদোষ তাকে বলা হয় যখন আপনি ঘুমের মধ্যে যৌনভাবে জাগ্রত বোধ করেন এবং ফলে আপনার শরীর থেকে বীর্য নির্গত হয় বা আপনি বীর্যপাত করেন স্বপ্নদোষ একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এটি কোন শারীরিক সমস্যা নয় এটি প্রজননক্ষম জীব হিসেবে মানব প্রজাতির স্বাভাবিকভাবে বেড়ে ওঠার একটি অংশ এটা জানা জরুরী যে একজন পুরুষের জন্য স্বপ্নদোষ খুব স্বাভাবিক ব্যাপার বিশেষত যখন তারা টিনেজ থাকে অনেক পুরুষের প্রতি রাতেই স্বপ্নদোষ হতে পারে আবার অনেকের হয়তোবা বছরে একবার কি দুইবার হয় দুটোই স্বাভাবিক স্বপ্নদোষ নানা কারণে হতে পারে যেমনঃ বয়ঃসন্ধিকালে যৌন হরমোনের আধিক্যের জন্য স্বাভাবিকের চেয়ে অতিরিক্ত যৌন বিষয়ক চিন্তা করা পর্ণগ্রাফি বা নীল ছবিতে আসক্ত হওয়া যৌন উদ্দীপক বই পড়া শয়নকালের পূর্বে যৌন বিষয়ক চিন্তা করা বা দেখা ইত্যাদি স্বপ্নদোষ এর পর আপনার অন্ডকোষ এবং পুরুষাঙ্গ ভালভাবে ধুয়ে নিবেন স্বপ্নদোষ হওয়ার জন্য কোন ছেলেকে কোন যৌন সম্পর্কে লিপ্ত হতে হবে না মেয়েদের সাথে কথা বলা অথবা তাদের ব্যপারে বিভিন্ন কথা শুনা এবং যৌন সম্পর্কের ব্যপারে অবহিত হওয়াই স্বপ্নের মধ্যে যৌন সম্পর্কের চিত্র গড়ে তোলার জন্য যথেষ্ট এর ফলে স্বপ্নদোষ হয়ে থাকে ভার্জিন বলতে এমন পুরুষ বা মহিলা কে বুঝায় যে কখনও সহবাস করে নি অনেকে বলে মেয়েদের যোনীতে একটি পাতলা পর্দার মত যে আবরণ থাকে তা দিয়ে ভারজিনিটি বুঝা যায় কিন্তু এটা ভাল কোন নির্দেশক নয় অনেক মেয়ের জন্ম থেকেই এই পর্দা থাকে না আবার অনেকের খেলাধুলা কঠিন শারীরিক পরিশ্রম অথবা আভ্যন্তরীণ অঙ্গের পরীক্ষা করার সময়ও এই পর্দা ফেটে যেতে পারে না ভার্জিন শব্দটি পুরুষমহিলা সকলের জন্য প্রযোজ্য ভার্জিন বলতে সেই ব্যক্তিকে বুঝায় যে কখনো সহবাস করে নি এর সাথে পুরুষ বা মহিলা হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই এটি জানার কোন উপায় নেই কারণ ভার্জিনিটি বলতে বুঝায় এমন ব্যক্তি যে কখনও সহবাস করেনি অনেকে বলে মেয়েদের যোনীতে একটি পাতলা পর্দার মত যে আবরণ থাকে তা দিয়ে ভারজিনিটি বুঝা যায় কিন্তু এটা ভাল কোন নির্দেশক নয় অনেক মেয়ের জন্ম থেকেই এই পর্দা থাকে না আবার অনেকের খেলাধুলা কঠিন শারীরিক পরিশ্রম অথবা আভ্যন্তরীণ অঙ্গের পরীক্ষা করার সময়ও এই পর্দা ফেটে যেতে পারে এই পর্দার সাথে ভার্জিনিটির কোন সম্পর্ক নেই না দীর্ঘ সময় যৌন মিলন না করলে কোন ক্ষতি বা অসুস্থতার সম্মুখীন হতে হবে না দীর্ঘ বিরতির পরে যদি কোন নারী বা পুরুষ আবার যৌন মিলন করে তবে সে আগের মতই উপভোগ করবে না কঠিন হবে না যোনিতে অবস্থিত পর্দা সর্বদা অনেক পাতলা এবং নরম থাকে এমনকি কোন মহিলা দীর্ঘকাল ভার্জিন থাকলেও এর উত্তর এখনও মানুষের কাছে অজানা আজকাল বিজ্ঞানীরা মনে করেন যে একই লিঙ্গের মানুষের প্রতি যৌন আকৃষ্ট হওয়া বিভিন্ন কারণে ঘটে এর মধ্যে জৈবিক বা জিনগত কারণের পাশাপাশি সামাজিক প্রভাব ও অন্তর্ভুক্ত রয়েছে তবে বিজ্ঞানীরা জোর দিয়ে বলেছেন যে বিষয়টি এখনও পুরোপুরি অনুসন্ধান করা হয়নি এবং এর অন্যান্য কারণও থাকতে পারে যৌন মিলনের সময় উভয় সঙ্গীই উপভোগ করে যৌন মিলনের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি হল পুরুষ এবং মহিলা উভয়ই সর্বাধিক পরিমাণে একে অপরকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করে দুজনই যদি গুরুতরভাবে তাদের সঙ্গীকে সন্তুষ্ট করার চেষ্টা করেন তবে দুজনেই সহবাস করে প্রচুর আনন্দ পাবেন হ্যাঁ সহবাসের সময় মহিলারাও প্রচণ্ড উত্তেজনা অনুভব করে উত্তেজিত অবস্থায় মহিলাদের দেহে এক বিশেষ ধরণের হরমোন নির্গত হয় যা তার মধ্যে অনেক আনন্দ তৈরি করে তবে উত্তেজিত অবস্থায় পুরুষদের মত মহিলাদের বীর্যপাত হয় না বরং বিশেষ ধরণের যোনীরস যোনীপথে নির্গত হয় যা সহবাসকে সহজতর করে এবং পুরুষের বীর্য থেকে আগত শুক্রাণুকে জরায়ুতে পৌঁছাতে সাহায্য করে মহিলাদের যোনী ভিজে যাওয়া যৌন উত্তেজনার লক্ষণ এই তরলটি পুরুষাঙ্গের যোনিতে প্রবেশের পথটিও মসৃণ করে এই তরলের উৎস হল যোনীর মধ্যে অবস্থিত বিশেষ গ্রন্থি এক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো যৌন মিলনের সময় যেন উভয় সঙ্গীই শারীরিক এবং মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকে কারো মধ্যে কোন সংশয় বা দ্বিধা থাকলে উত্তেজিত হওয়ার প্রবণতা হ্রাস পায় যদি উভয়ে প্রস্তুত থাকে তবে যৌন মিলনের সময় একে অপরকে সন্তুষ্ট করার মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অংশ স্পর্শ করার মাধ্যমে সহজে অর্গাজম হতে পারে অর্গাজম আরও একটি উপায় হলো হস্তমৈথুন ছেলেদের শারীরবৃত্তীয় গঠনের কারণে অর্গাজম মেয়েদের তুলনায় দ্রুত হয় তবে পুরুষরা যদি নিশ্চিত হন যে মহিলা যৌনমিলনের জন্য প্রস্তুত এবং যদি তারা ফোরপ্লে করার জন্য যথেষ্ট সময় নেয় তবে পুরুষ এবং মহিলার পক্ষে একসাথে প্রচণ্ড উত্তেজনা তৈরি করা সম্ভব এটি তাদের উভয়ের জন্য অনেক বেশি উপভোগ্য হবে পুরুষের লিঙ্গ খাড়া হওয়া তার যৌন উত্তেজনার লক্ষণ যদি কোন পুরুষ এমন কিছু দেখে বা চিন্তা করে যা সে যৌনমিলন বা নারীর জননাঙ্গের সাথে সম্পর্কিত করতে পারে তবে সে যৌন উত্তেজনা অনুভব করে এবং তার লিঙ্গ উত্থিত হয় একজন পুরুষের অর্গাজম হলে সাধারণত তার লিঙ্গ খাড়া হয় এবং বীর্যপাত ঘটে অনেক সময় যৌনমিলনের সময় পুরুষের অর্গাজম হয় না কারণ অর্গাজমের জন্য অনেক বেশি শক্তিক্ষয় হয় সেজন্য শারীরিক শক্তিকে কমিয়ে ফেলে এমন কোন কাজ করলে (যেমন অসুস্থতা নেশা করা মদ খাওয়া খাবার কম খাওয়া ইত্যাদি) অর্গাজমে অসুবিধা হয় মহিলাদের ক্ষেত্রে অর্গাজম না হওয়ার স্বাভাবিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছে ফোরপ্লে এর অভাব যৌন মিলনের জন্য মানসিকভাবে প্রস্তুত না থাকা ইত্যাদি অতএব অর্গাজম না হলে কোন কারণে হচ্ছে না সেটি শনাক্ত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত পুরুষ যখন যৌন উত্তেজিত হয় তখন লিঙ্গে থাকা রক্তনালীগুলোতে অনেক বেশি রক্ত সঞ্চালিত হয় ফলে রক্তনালীর ভিতর রক্তের চাপের কারণে লিঙ্গ উত্থিত হয় রক্তনালীতে অপর্যাপ্ত চাপের বেশ কিছু কারণ হতে পারে যেমন যৌন মিলনের জন্য শারীরিক ও মানসিকভাবে অপ্রস্তুতি সঙ্গীর প্রতি ভালোবাসার অভাব মদ্যপান ওষুধের অপব্যবহার ধূমপান অসুস্থতা খাদ্যাভাব ইত্যাদি অতএব যদি কখনও দেখা যায় যে লিঙ্গ উত্থিত হতে সমস্যা হচ্ছে তাহলে কোন কারণের জন্য এমন হচ্ছে সেটি চিহ্নিত করে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে এটা অসম্ভব কারণ যোনী প্রসারনযোগ্য ত্বক দিয়ে তৈরি সেজন্য কোন পুরুষের লিঙ্গ যত বড়ই হোক না কেন যোনী সেই অনুযায়ী প্রসারিত হয়ে লিঙ্গের জন্য যথেষ্ট জায়গা করে দিবে মনে রাখা উচিত যোনী কোনও সন্তানের জন্ম দেওয়ার জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে প্রসারিত হতে পারে সেখানে লিঙ্গ আটকে যাওয়ার কোন সম্ভাবনাই নেই মহিলাদের যোনী প্রসারনযোগ্য ত্বক দিয়ে গঠিত সন্তান প্রসবের সময় একজন মহিলার যোনী ব্যাসে প্রায় ১০ থেকে ১২ সেন্টিমিটার পর্যন্ত প্রশস্ত হতে পারে তবে অল্প বয়সী মেয়েদের যোনী তুলনামূলক কম প্রসারিত হতে পারে না যৌন মিলনের নিজেকে ধৌত না করলে কোন অসুবিধা নেই তবে স্বাস্থ্যবিধির কথা মনে রেখে যৌন মিলনের পর নিজের জননাঙ্গ ধুয়ে ফেলা উচিত যদি উভয় সঙ্গীর কোন প্রকার যৌনবাহিত রোগ না থাকে তবে মেয়েদের মাসিকের সময় যৌন মিলন করলে কোন শারীরিক ক্ষতি হয় না তবে যদি কারো যৌনবাহিত রোগ থাকে তবে খুব সহজে অন্যজন যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে কারণ মাসিক এর সময় জরায়ুর মুখ খোলা থাকে ফলে ভাইরাসগুলো খুব সহজে মেয়ের শরীরে প্রবেশ করতে পারে আবার বিপরীতভাবে যদি মেয়ে যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত থাকে এবং তার যোনীস্রাব ছেলের জননাঙ্গে লেগে যায় তবে সেই ছেলেও আক্রান্ত হতে পারে হ্যাঁ হতে পারে ভগাঙ্কুরে অসংখ্য স্নায়ুপ্রান্ত রয়েছে সেজন্য মহিলাদের ভগাঙ্কুর/ক্লিটোরিস স্পর্শ করলে উত্তেজনা হতে পারে হ্যাঁ হতে পারে পুরুষাঙ্গের শীর্ষে অসংখ্য স্নায়ুপ্রান্ত রয়েছে সেজন্য পুরুষাঙ্গ স্পর্শ করলে উত্তেজনা হতে পারে উত্তেজনার ফলে পুরুষাঙ্গে অবস্থিত রক্তনালীগুলো রক্ত দিয়ে পূর্ণ হয়ে ওঠে ফলে তা শক্ত হয়ে যায় ঘর্ষণ করা চালিয়ে গেলে এক পর্যায়ে বীর্যপাতও হতে পারে তবে এক্ষেত্রে শারীরিক বা মানসিক কোন প্রকার ক্ষতিসাধন হয় না পায়ু সঙ্গম খুব বিপদজনক কারণ যৌন মিলনের সময় পায়ুপথে পিচ্ছিলকারী কোন পদার্থ নির্গত হয় না আবার পায়ুপথের চামড়া সাধারণত অনেক নরম হয়ে থাকে ফলে পুরুষের লিঙ্গ যদি মহিলার পায়ুপথে প্রবেশ করে তবে ঘর্ষণের জন্য ছোট কাতা বা ক্ষত তৈরি হতে পারে এই ক্ষতের মধ্য দিয়ে খুব সহজে বিভিন্ন যৌনবাহিত রোগের সংক্রমণ ঘটতে পারে তাছাড়া মহিলার পায়ুপথে যদি পুরুষের বীর্যপাত হয় তবে সেই বীর্যকে পরিষ্কার করার কোন শারীরিক ব্যবস্থা পায়ুপথে নেই কিন্তু যোনীপথে বিশেষ এসিড উৎপন্ন হয় যা বীর্যের বিষাক্ততাকে উপশম করতে পারে অতএব সার্বিক বিবেচনায় কখনো পায়ু সঙ্গম করা উচিত নয় যদি পুরুষ সঙ্গী যৌনবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকে তবে মহিলা সঙ্গীর মুখে বীর্যপাত হলে কোন অসুবিধা নেই তবে যদি পুরুষ সঙ্গী কোন প্রকার যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত থাকে তাহলে অবশ্যই বিপদের আশংকা আছে এক্ষেত্রে মহিলা সঙ্গীও যৌনবাহিত রোগে আক্রান্ত হতে পারে ক্ষুধাহীনতার প্রধান লক্ষণ হচ্ছে ওজন হ্রাস এছাড়াও অন্যান্য শারীরিক ও মানসিক লক্ষণ রয়েছে ক্ষুধাহীনতায় আক্রান্ত একজন ব্যক্তি খুব কম ওজনের হতে চান–এতোটাই কম যেটা তাদের বয়স ও উচ্চতা অনুযায়ী যেটা উপযুক্ত তার থেকেও অনেক কম তারা ওজন বাড়ানোর ভয়ে এতোটাই ভীত যে তারা সাধারণ খাওয়াটুকুও খেতে পারে না খাবার গ্রহনের সময় অনুপস্থিত থাকা খুব সামান্য খাওয়া গ্রহন করা বা কোনো চর্বিযুক্ত খাবার খাওয়া এড়িয়ে যাওয়া কি এবং কখন খেয়েছে সেই সম্পর্কে মিথ্যা তথ্য দেয়া অত্যধিকবার খাদ্যে ক্যালোরি গণনা ওজন সম্পর্কে মিথ্যা কথা বলা অত্যধিকবার ব্যায়াম করা ক্ষুধা দমিয়ে রাখার খাদ্য বড়িগুলো এবং চিকন করার ওষুধ গ্রহণ করা নিজেদের জোর করে বমি করানো – আপনি লক্ষ্য করবেন তারা অবিলম্বে খাওয়ার পরে টেবিল ছেড়ে উঠে যেতে পারে অথবা তাদের দাঁতের ক্ষয় পাওয়া যায় বা বমির মধ্যে অ্যাসিড দ্বারা সৃষ্ট নিঃশ্বাসে দুর্গন্ধ পাওয়া যেতে পারে তারা laxatives বা diuretics (যে ঔষধ শরীর থেকে তরল অপসারণ করতে সাহায্য করে) গ্রহন করতে পারে যদিও বাস্তবে খাদ্য থেকে শোষিত ক্যালোরি উপর এসব ঔষধের সামান্যই প্রভাব থাকে ক্ষুধাহীনতায় ভুক্ত মানুষ প্রায়ই বিশ্বাস করে যে মানুষ হিসেবে তাদের মূল্য তাদের ওজন ও বাহ্যিক চেহারার উপর নির্ভরশীল তারা এটাও মনে করে থাকে যে অন্যান্যরা তাদের আরো বেশী পছন্দ করবে অথবা তারা আনন্দিতবোধ করবে যদি তারা চিকন হয় এবং তাদের অত্যধিক ওজন কমানোর প্রচেষ্টাকে ইতিবাচক ভাবে দেখে তাদের প্রায়ই নিজেদের চেহারা দেখতে কেমন এই সম্পর্কে অপ্রাসঙ্গিক ধারনা আছে যে ধারনা তারা মোটা না হওয়া সত্ত্বেও মোটা হিসেবে নিজেদের গণ্য করে অনেকে কিছু আচরণ চর্চা করে থাকে যা নিরবচ্ছিন্নভাবে এবং বারবার আচরণের টাইপ অভ্যাস নিজেদের ওজন মাপা নিজেদের কোমরের আকার পরিমাপ করা আয়নায় তাদের শরীর পরীক্ষণ ক্ষুধাহীনতায় ভোগা মানুষের সাধারণত আত্মমর্যাদা কম বা আত্মবিশ্বাস কম হয়ে থাকে তারা সম্পর্ক থেকে নিজেকে প্রত্যাহার পরিবার এবং বন্ধুদের কাছ থেকে দূরত্ব বজায় রাখা এবং পূর্ববর্তী যেসব কর্মকান্ড তারা উপভোগ করতো সেগুলোর প্রতি আগ্রহ হারাতে পারেনএছাড়াও ক্ষুধাহীনতার কারনে একজন ব্যক্তির স্কুলের কার্যক্রম বা কর্মক্ষেত্রে তাদের অবদান প্রভাবিত হতে পারে দীর্ঘ সময়যাবত খুব সামান্য খাদ্যাগ্রহনের কারনে কিছু শারীরিক উপসর্গ হতে পারে যেমনঃ পেট ফুলে যাওয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য মাথাব্যাথা উদ্ভ্রান্ত বা হতবুদ্ধি অনুভব খুব ক্লান্ত বোধ করা ঠাণ্ডা লাগা রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার কারনে হাত এবং পা বর্ণহীন হয়ে যাওয়া শুষ্ক ত্বক মাথার খুলি থেকে চুল পড়ে যাওয়া পেটে ব্যথা ঘুমানোর সমস্যা শরীরের উপর অবাঞ্ছিত লোম গজানো ভঙ্গুর নখ ইত্যাদি দীর্ঘ সময়যাবত খুব সামান্য খাদ্যাগ্রহনের কারনে কিছু শারীরিক উপসর্গ হতে পারে যেমনঃ পেট ফুলে যাওয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য মাথাব্যাথা উদ্ভ্রান্ত বা হতবুদ্ধি অনুভব খুব ক্লান্ত বোধ করা ঠাণ্ডা লাগা রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার কারনে হাত এবং পা বর্ণহীন হয়ে যাওয়া শুষ্ক ত্বক মাথার খুলি থেকে চুল পড়ে যাওয়া পেটে ব্যথা ঘুমানোর সমস্যা শরীরের উপর অবাঞ্ছিত লোম গজানো ভঙ্গুর নখ ইত্যাদি দীর্ঘ সময়যাবত খুব সামান্য খাদ্যাগ্রহনের কারনে কিছু শারীরিক উপসর্গ হতে পারে যেমনঃ পেট ফুলে যাওয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য মাথাব্যাথা উদ্ভ্রান্ত বা হতবুদ্ধি অনুভব খুব ক্লান্ত বোধ করা ঠাণ্ডা লাগা রক্ত চলাচল কমে যাওয়ার কারনে হাত এবং পা বর্ণহীন হয়ে যাওয়া শুষ্ক ত্বক মাথার খুলি থেকে চুল পড়ে যাওয়া পেটে ব্যথা ঘুমানোর সমস্যা শরীরের উপর অবাঞ্ছিত লোম গজানো ভঙ্গুর নখ ইত্যাদি যেসব শিশুদের ক্ষুধামান্দ্য রয়েছে তাদের বয়ঃসন্ধি এবং শারীরিক বৃদ্ধি বিলম্ব হতে পারে তারা প্রত্যাশিত ওজনের তুলনায় কম ওজন লাভ করতে পারে এবং একই বয়সের অন্যদের চেয়ে ছোট আকারের হতে পারে নারী ও বয়স্ক মেয়েদের ক্ষুধাহীনতার কারনে(বাধক অথবা অনুপস্থিত ঋতুচক্র নামে পরিচিত) মাসিক বা ঋতুচক্র বন্ধ হয়ে যেতে পারে অনেক ধরনের চিকিৎসা সেবা প্রদানকারীই দাবি করে যে তাদের সেবাগুলো নিলে পুরুষাঙ্গের আকার বৃদ্ধি পায় কিন্তু এর স্বপক্ষে খুব সামান্য প্রমান পাওয়া যায় এই সব টিভি বিজ্ঞাপন যেগুলোতে বিভিন্ন হারবাল ও হোমিওপ্যাথিক ক্লিনিকে বিকলাঙ্গ পুরুষাঙ্গ ঠিক করার ও যৌনশক্তি বৃদ্ধি করার ওষুধ মলম মালিশ ইত্যাদি বিক্রির কথা বলা হয় এড়িয়ে চলুন এগুলোতে কাজ হলে কোন বিজ্ঞাপন দেয়ার দরকার হত না এগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া মারাত্মক হতে পারে এবং এর কারনে আপনার স্বাভাবিক যৌনক্ষমতাও নষ্ট হতে পারে তাই আপনি আপনার পুরুষাঙ্গের আকৃতি নিয়ে অসন্তুষ্ট হলে ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করান এটি যদি ঠিকভাবে কাজ করে তাহলে আর দুশ্চিন্তা করবেন না মেয়েদের যোনিপথ গড়ে সর্বোচ্চ তিন ইঞ্চি হয় তাই অনেক লম্বা পুরুষাঙ্গ দিয়ে আসলে কোন বিশেষ কাজ হয় না অনিরাপদ ঔষধ এড়িয়ে চলা উত্তম এর কারনে আপনার স্বাভাবিক যৌনক্ষমতাও নষ্ট হতে পারে পুষ্টিকর খাবার গ্রহন ও ব্যায়াম করুণ খুব বেশি সমস্যা হলে ডাক্তার দিয়ে পরীক্ষা করান প্রথমে যে কোন ধরনের অভ্যেস যা সমস্যাটির কারন হতে পারে তা বর্জন করুন আপনি ধূমপান অতিরিক্ত মদ্যপান এবং ড্রাগ নেয়া বন্ধ করে দিলে সমস্যাটি একসময় দূর হয়ে যাওয়ার কথা তবে এতে কয়েক মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে রাতারাতি ভাল করে দিতে পারে এমন কোন ওষুধ নেই আপনাকে যদি রক্তচাপ নিয়ন্ত্রনের বা বিষণ্ণতা দূর করার ওষুধ খেতে দেয়া হয় তাহলে আপানার ডাক্তার হয়ত সেগুলো পরিবর্তন করে দিতে পারবেন টেসটোস্টেরনের পরিমাণ কমে গেলে হরমোন প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে তার চিকিৎসা করা সম্ভব তবে এর সাথে সাথে আপনাকে ইরেকশনে সহায়তা করে এমন ওষুধও খেতে হবে অন্যান্য ক্ষেত্রে যেমন ডায়বেটিস বা উচ্চ রক্তচাপ হলে সেগুলোর চিকিৎসা করে ইরেকশনের উন্নতি ঘটানো সম্ভব কোন কোন পুরুষ সাইকোসেক্সুয়াল থেরাপি নিলে উপকার পেতে পারেন এতে আপনি ও আপনার সঙ্গিনী আপনাদের সম্পর্কের যেকোনো বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে পারেন ডাক্তার দেখান উনি পরীক্ষা করে দেখবেন এবং কারন নির্ণয়ের জন্য রক্ত পরীক্ষাও করতে দিতে পারেন ইরেক্টাইল ডিসফাংশন অন্যান্য সমস্যার নির্দেশকও হতে পারে এটি উচ্চ রক্তচাপ উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল এবং ডায়বেটিসের সাথে সম্পর্ক যুক্ত এর যে কোনটি ভবিষ্যতে হৃদরোগ হওয়ার পূর্বলক্ষণ হতে পারে ডাক্তার আপনার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিশ্চিত করবেন সাধারণত প্রতি ১০ জনে একজন পুরুষমানুষের সঙ্গমের সময় দ্রুত বীর্যপাত অথবা ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের মত সমস্যা হয় বলে ধারনা করা হয় কোন পুরুষ যৌনক্রিয়ায় ঠিকভাবে অংশগ্রহণ করতে না পারলে সেটিকে যৌন সমস্যা বলা হয় এর প্রধানতম সমস্যাটি হচ্ছে ঠিকমত ইরেকশন (erection) বা লিঙ্গ সুদৃঢ় না হওয়া এবং দ্রুত বীর্যপাত ২০৪০ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে ৭৮ ৪০৫০ বছর বয়সী পুরুষদের মধ্যে ১১ ষাটোর্ধ পুরুষদের ৪০ এবং ৭০ বছরের বেশি বয়সের পুরুষদের অর্ধেকই এই সমস্যায় ভোগেন ঠিকমত ইরেকশন (erection) বা লিঙ্গ সুদৃঢ় না হওয়া এই সমস্যাটি হলে পুরুষদের লিঙ্গ সুদৃঢ় হয় না বা হলেও তারা সেটি বেশিক্ষন ধরে রাখতে পারে না বেশিরভাগ পুরুষেরই জীবনে কখনো না কখনো এই সমস্যাটি হয় বিশেষজ্ঞদের মতে এটি তখনই সমস্যা হিসেবে বিবেচনা করা হয় যখন কোন পুরুষ বা তার সঙ্গিনী এটিকে সমস্যা মনে করেন অনেকগুলো কারণে এটি হতে পারে মানসিক কারণে (যেমনঃ নাইট নার্ভ (night nerves)) কম বয়সী পুরুষদের এই সমস্যাটি যা দীর্ঘস্থায়ী হয় না তবে অনেক জটিল মানসিক সমস্যার কারনে এটি হতে পারে যার জন্য সাইকোসেক্সুয়াল থেরাপিস্টের সাহায্য নিতে হতে পারে কর্মক্ষেত্র টাকাপয়সা সম্পর্কের টানাপোড়েন পারিবারিক সমস্যা এমনকি ইরেকশন না হওয়া নিয়ে দুশ্চিন্তার কারনেও সমস্যাটি হতে পারে ইরেক্টাইল ডিসফাংশনের শারীরিক কারণগুলোর মধ্যে রয়েছেঃ হৃদরোগ ডায়বেটিসরক্তচাপ বেড়ে যাওয়া কলেস্টেরল বেড়ে যাওয়া এতে ধমনিগুলো সঙ্কুচিত হয়ে পড়ে যৌনাঙ্গের ধমনিগুলো এমনিতেই খুব সরু (১২ মিমি ব্যাসার্ধের যেখানে হৃৎপিণ্ডের ধমনিগুলো ১০ মিমি) ব্যাসার্ধের) হয় টেসটোস্টেরনের পরিমাণ কমে যাওয়া পুরুষদের বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে টেসটোস্টেরনের পরিমাণ কমতে থাকে তবে সব পুরুষেরাই এর দ্বারা প্রভাবিত হয় না যারা এর কারনে সমস্যায় পড়েন তারা ক্লান্ত আনফিট এবং যৌনক্রিয়ায় অসমর্থ বোধ করবেন এবং এর প্রতি আগ্রহ হারিয়ে ফেলবেন যে সব ড্রাগ বা ওষুধের কারনে ইরেক্টাইল ডিসফাংশন হয়ঃ (১) রক্তচাপ কমাতে এবং বিষণ্ণতা দূর করতে ব্যবহৃত ঔষধ ও খিঁচুনি কমানোর ঔষধ (২) ধূমপান মদ গাঁজা ও কোকেইনের মত ড্রাগ না এটা সন্তান জন্মদানের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া মানবজীবন সম্প্রসারিত করার জন্য সকল স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং কিছু ফুলের গাছের মধ্যে যৌন প্রজনন দেখা যায় অপরাধ একটা মানবসৃষ্ট ধারণা প্রকৃতির প্রতি সাড়া দেওয়া দোষের কিছু না তবে সেটা আইনগত বৈধ হওয়া জরুরী নতুনদের নিকট যৌন সহবাস উদ্ভট এবং অপ্রস্তুত মনে হয় কিছুটা সহবাসের সাথে মানিয়ে নিতে কিছুটা সময় লাগে এটা সবার ক্ষেত্রে হয় না কারো কারো আরো সতেজ মনে হয় তবে সহবাসের সময় দেহের ক্ষুদ্র বৃহৎ অনেক ধরণের পেশী ব্যবহৃত হয় সেজন্য সহবাসের পর ক্লান্তি অনুভব করা খুবই স্বাভাবিক একটি ব্যাপার বীর্য যখন পুরুষাঙ্গ দিয়ে বের হবার উপক্রম হয় তখন হৃদস্পন্দন বেড়ে যায় শ্বাস দ্রুত হয় ঘাম চলে আসে পেশীতে চাপ ধরে সংবেদনশীল অনুভূত হয় এবং মানুষ তখন একটা তৃপ্তি লাভ করে যখন মানুষ তৃপ্তি লাভ করে তখন সে বিভিন্ন ধরণের শব্দ করে থাকে অনেকেই যৌন সহবাস সম্পর্কে অনেক আগ্রহী থাকে যৌন সহবাস কিছু জিনিসের উপর নির্ভর করে যেমন যৌন সহবাসের যোগ্যতা সঙ্গী পাওয়া যে যৌন সহবাসে ইচ্ছুক এবং সহবাসের জন্য নিরাপদ জায়গা কেউ কেউ কখনই যৌন সহবাসে লিপ্ত হয় নি কেউ কেউ অল্পবার করেছে আবার কেউ কেউ মাঝে মাঝে করে থাকে মানুষ যৌন সহবাস করে থাকে কারণ এটা উভয়কেই তৃপ্তি প্রদান করে এবং এটা ভালবাসার বহিঃপ্রকাশ অনেক সময় ভালোবাসা থাকার সত্ত্বেও যৌন সহবাসে অনেকে অসস্থি অনুভব করে তখন তারা কথাবার্তা বলে বিষয়টা মানিয়ে নিতে পারে কারো কাছে এটা শক্তিবর্ধকও তবে যৌন সহবাসের ফলে ক্যালরি বার্ন হয় যার ফলে ক্লান্ত লাগে অন্যের প্রতি আকর্ষণ এবং অন্যকে ভালবাসতে চাওয়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার যৌন সহবাস ভালোবাসা প্রকাশ করার অন্যতম একটি পন্থা এবং ভালোবাসা প্রকাশের অন্যান্য উপায়ও আছে সহজাত প্রবৃত্তি নিবারণের জন্য আমরা নিজেরা কিছু নিয়মকানুন তৈরি করি যেমন প্রতিদিন এক গ্যালন পচ্ছন্দের আইসক্রিম একজনকে প্রতিদিন আইসক্রিম খেতে প্রলুব্ধ করবে কিন্তু তার এই প্রবৃত্তি ধরে রাখার কিছু কারণও তার জানা আছে তাই আমরা আমাদের প্রবৃত্তি সম্পর্কে জানি অন্যর প্রতি আকর্ষণ এবং অন্যকে ভালবাসতে চাওয়া একটি স্বাভাবিক ব্যাপার যৌন সহবাস ভালোবাসা প্রকাশ করার অন্যতম একটি পন্থা এবং ভালোবাসা প্রকাশের অন্যান্য উপায়ও আছে সহজাত প্রবৃত্তি নিবারণের জন্য আমরা নিজেরা কিছু নিওমকানুন তৈরি করি যেমন প্রতিদিন এক গ্যালন পচ্ছন্দের আইসক্রিম একজনকে প্রতিদিন আইসক্রিম খেতে প্রলুব্ধ করবে কিন্তু তার এই প্রবৃত্তি ধরে রাখার কিছু কারণও তার জানা আছে তাই আমরা আমাদের প্রবৃত্তি সম্পর্কে জানি নিজের আত্মতুষ্টির সাথে সাথে সঙ্গীর আত্মতুষ্টি করা হয় বিভিন্ন স্পর্শকাতর অঙ্গে স্পর্শের মাধ্যমে যৌন সহবাসের সময় সুবিধাজনক অবস্থান নেওয়ার জন্য অনেক সময় নড়াচড়ার প্রয়োজন হয়ে থাকে মাঝেমধ্যে নতুন কোন বাসনার প্রচেষ্টার জন্যও নড়াচড়ার প্রয়োজন হয় না প্রকৃতপক্ষে বিয়ের পূর্বেই যৌন সহবাস বিভিন্ন জটিল যৌনরোগ এবং এইচআইভি এইডসের কারণ হতে পারে এছাড়াও যৌন বিকলঙ্গতাও দেখা দিতে পারে না যোনিপথ প্রসারণযোগ্য একটি নবজাতকের মাথার পৃষ্ঠতলের ক্ষেত্রফল ৩৫ বর্গসেন্টিমিটার হয় যেটা যোনিপথের একই পথ দিয়ে বের করা হয় নবজাতকের মাথার তুলনায় পুরুষাঙ্গ কিছুই না আপনি কি কখনো খাবার গিলতে ব্যাথা অনুভব করেন কখনই না সহবাসও খাদ্য গ্রহণের মতই শরীরবৃত্তীয় ব্যাপার পুরুষাঙ্গ নয় ভয় এবং ব্যাথার পূর্বাভাসই আসল সমস্যা সহবাসের সময় পুরুষাঙ্গ যোনিপথে প্রবেশ করানোর পূর্বে আদর সোহাগ যোনিপথকে প্রসারিত করে পরিস্থিতির কারণে অনেক সময় শারীরিক সম্পর্কে জড়িত হতে হয় যা অনেককেই অবাক বা আশ্চর্য করে দেয় তাই শারীরিক সম্পর্কে আগ্রহী হওয়ার ইঙ্গিত সম্পর্কে জানুন কেউ যদি আপনাকে নীরব বা জনহীন স্থান খুঁজতে বলে অথবা শারীরিক সংস্পর্শে আসে কিংবা হঠাৎ করে আপনাকে আকর্ষিত বিমোহিত বা অতিরঞ্জিত প্রশংসা করতে থাকে তবে তার অর্থ দাঁড়াতে পারে যে উক্ত ব্যক্তি আপনার সাথে যৌনমিলনে আগ্রহী যাতে আপনার আগ্রহ নাও থাকতে পারে যখন আপনি যৌন মিলন করতে চান তখন তার মাধ্যমে গর্ভাবস্থা সৃষ্টি অথবা যৌন বাহিত সংক্রমণ (এসটিআই) যেমন ক্লাইমিডিয়াতে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা বা ঝুঁকি থাকে আপনি যার সাথে শারীরিক সম্পর্ক করতে চান তার সাথে সহবাসের পূর্বে গর্ভনিরোধ পদ্ধতি ও কনডম সম্পর্কে আলোচনা করা জরুরি এ বিষয়ে আলোচনা করা উভয়েরই দায়িত্ব কোনো সমস্যা ছাড়াই আপনি জন্মবিরতিকরণ পিল গ্রহন করতে পারেন যেকোন ফার্মেসি থেকে আপনি জরুরী হরমোনাল (হরমোন মিশ্রিত) পিল সংগ্রহ করতে পারবেন জরুরী জন্মনিরোধ পদ্ধতি (সকালে গৃহীত পিল) অনিরাপদ যৌন মিলনের পরবর্তী ৭২ ঘন্টা পর্যন্ত কাজ করে তবে তা যত শীঘ্র আপনি গ্রহণ করবেন তা ততোই কার্যকর হবে কিন্তু মনে রাখতে হবে যে কনডম ফেটে যাওয়া পিল গ্রহণে ভুলে যাওয়া ধর্ষণ প্রভৃতি জরুরী সময়ে সকালে খাওয়ার পিল গ্রহণ করতে হয় জন্মবিরতির একটি নিয়মিত পদ্ধতি হিসেবে এটি গ্রহণ করা উচিৎ হবে না যৌনসঙ্গমের আগে আপনাকে জানতে হবে যে – (১) আপনার নিজের বা সঙ্গীর যৌন সংক্রামক রোগ আছে কি না (২) নিরাপদ যৌনসঙ্গমে কনডম কিভাবে ব্যবহার করতে হয় (৩) মেয়েদের গর্ভধারনের ঝুকি কিভাবে এরানো যায় গর্ভনিরোধক ব্যবহার না করে যৌনসঙ্গম করলে মেয়েটির গর্ভবতী হবার যথেষ্ঠ সম্ভাবনা রয়েছে সেটা প্রথমবার হোক অথবা দিত্বীয় বা তৃতীয় বার একটা মেয়ের শরীরে মাসের যে সময়টিতে ডিম্ব নিঃসরণ হয় তখন যদি কোন রকম নিরোধ ছাড়াই সে যৌনসঙ্গম করে তাহলে সে খুব স্বাভাবিক ভাবেই গর্ভবতী হবে এমনকি এটি মেয়েটির প্রথম মাসিকের আগে আগেও হতে পারে দাড়িয়ে বা বসে অথবা যেকোন অবস্থায় যৌনসঙ্গম করলেই গর্ভবতী হতে পারেন মাসিকের সময় যৌনসঙ্গম করলেও গর্ভবতী হতে পারেন পুরুষাঙ্গ বীর্যপাত হবার আগে বের করে নিলেও গর্ভধারনের সম্ভাবনা আছে কারণ অনেকের বীর্য পাতের পূর্বেও কিছু বীর্য/স্পার্ম ভিতরে পরতে পারে এবং যৌন সংক্রামক রোগও হতে পারে এজন্য জন্ম নিয়ন্ত্রণে আপনি কন্ট্রাসেপটিভ পিল অথবা কনডম ব্যবহার করতে পারেন এগুলো আপনাকে গর্ভবতী হওয়া থেকে সুরক্ষিত করবে এমন কথার কোন ভিত্তি নাই কেননা যৌনসঙ্গম না করলে কোন ছেলের কোন ক্ষতি হয়না শুক্রাণু সবসময় তৈরি হয় এবং তা শরীরের মাঝে এবজর্ব হয়ে যায় মেয়েদের প্রথম মাসিক হলেই সে যৌনসঙ্গম করবার জন্য যোগ্য নয় মাসিক শুরু হওয়া মানে এই নয় যে আপনি যৌনসঙ্গম করবার জন্য যোগ্য একেকজন একেক সময় যৌনসঙ্গম করতে আগ্রহী হয় মাদক হলো এক ধরনের ক্যামিক্যাল সেটা যেকোনো ধরনের ক্যামিক্যাল হতে পারে যেই ক্যামিক্যাল তার মনের মধ্যে উত্তেজনাও উদ্দীপনা তৈরি করে সাময়িকভাবে পরে সেটি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং আসক্তিতে রূপান্তর হয় তখন এটি মাদকাসক্তি হয় কিশোরকিশোরীরা মাদকাসক্তিতে জড়ানোর অন্যতম প্রধান কারণ হলো এমন দল বা গোষ্ঠী এর সংস্পর্শে আসা যারা মাদক দ্রব্য গ্রহণ করে আবার অনেকে মনে করে মাদক গ্রহণ করলে মানসিক প্রশান্তি আসে এবং তাদের সমস্যার সমাধান হবে অতএব মাদকাসক্তি এড়ানোর জন্য এমন গোষ্ঠী থেকে দূরে থাকতে হবে নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে যেমন ব্যয়াম পড়াশুনা বাসায় বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা অথবা কোন সামাজিক সংগঠনে যোগদান করা ইত্যাদি কেউ মাদকদ্রব্যের প্রলোভন দেখালে শক্ত ভাবে না করতে হবে তাকে বুঝাতে হবে মাদক কীভাবে স্বাস্থ্য সম্পদ ও জীবনের ক্ষতিসাধন করে এবং কেনো আপনি মাদকদ্রব্য গ্রহণ করতে চান না এমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই আপনার থেকে বয়সে বড় ব্যক্তিদের বিশেষভাবে পিতামাতা ও গুরুজন এর কাছে সাহায্য ও পরামর্শ নেওয়া উচিত মাদক হলো এক ধরনের ক্যামিক্যাল সেটা যেকোনো ধরনের ক্যামিক্যাল হতে পারে যেই ক্যামিক্যাল তার মনের মধ্যে উত্তেজনাও উদ্দীপনা তৈরি করে সাময়িকভাবে পরে সেটি ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়ায় এবং আসক্তিতে রূপান্তর হয় তখন এটি মাদকাসক্তি হয় কিশোরকিশোরীরা মাদকাসক্তিতে জড়ানোর অন্যতম প্রধান কারণ হলো এমন দল বা গোষ্ঠী এর সংস্পর্শে আসা যারা মাদক দ্রব্য গ্রহণ করে আবার অনেকে মনে করে মাদক গ্রহণ করলে মানসিক প্রশান্তি আসে এবং তাদের সমস্যার সমাধান হবে অতএব মাদকাসক্তি এড়ানোর জন্য এমন গোষ্ঠী থেকে দূরে থাকতে হবে নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে যেমন ব্যয়াম পড়াশুনা বাসায় বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা অথবা কোন সামাজিক সংগঠনে যোগদান করা ইত্যাদি কেউ মাদকদ্রব্যের প্রলোভন দেখালে শক্ত ভাবে না করতে হবে তাকে বুঝাতে হবে মাদক কীভাবে স্বাস্থ্য সম্পদ ও জীবনের ক্ষতিসাধন করে এবং কেনো আপনি মাদকদ্রব্য গ্রহণ করতে চান না এমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই আপনার থেকে বয়সে বড় ব্যক্তিদের বিশেষভাবে পিতামাতা ও গুরুজন এর কাছে সাহায্য ও পরামর্শ নেওয়া উচিত নিওরো কেমিক্যাল পরীক্ষায় দেখা গেছে মাদক সেবনের পরপরই ব্যক্তির মস্তিষ্কের কিছু কিছু জায়গায় অতি দ্রুত এবং বেশি পরিমাণে ডোপামিন নামক নিওরোট্রান্সমিটার বৃদ্ধি পায়যা একজন ব্যক্তিকে মাদকের আনন্দ দেয় এবং পরবর্তী কালে ব্যবহারে উৎসাহিত করে কিন্তু যারা দীর্ঘদিন ধরে মাদকে আসক্ত তাদের বেলায় আবার উল্টোটা দেখা যায় অর্থাৎ দীর্ঘদিন মাদক নেয়ার ফলে যে ডোপামিন একজন মানুষকে নেশার আনন্দ দিত তা আস্তে আস্তে কার্যকারিতা হারিয়ে ফেলে কিশোরকিশোরীরা মাদকাসক্তিতে জড়ানোর অন্যতম প্রধান কারণ হলো এমন দল বা গোষ্ঠী এর সংস্পর্শে আসা যারা মাদক দ্রব্য গ্রহণ করে আবার অনেকে মনে করে মাদক গ্রহণ করলে মানসিক প্রশান্তি আসে এবং তাদের সমস্যার সমাধান হবে অতএব মাদকাসক্তি এড়ানোর জন্য এমন গোষ্ঠী থেকে দূরে থাকতে হবে নিজেকে বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত রাখতে হবে যেমন ব্যয়াম পড়াশুনা বাসায় বিভিন্ন কাজে সাহায্য করা অথবা কোন সামাজিক সংগঠনে যোগদান করা ইত্যাদি কেউ মাদকদ্রব্যের প্রলোভন দেখালে শক্ত ভাবে না করতে হবে তাকে বুঝাতে হবে মাদক কীভাবে স্বাস্থ্য সম্পদ ও জীবনের ক্ষতিসাধন করে এবং কেনো আপনি মাদকদ্রব্য গ্রহণ করতে চান না এমন পরিস্থিতিতে অবশ্যই আপনার থেকে বয়সে বড় ব্যক্তিদের বিশেষভাবে পিতামাতা ও গুরুজন এর কাছে সাহায্য ও পরামর্শ নেওয়া উচিত প্রথমেই মাদকাসক্তির কারণ শনাক্ত করে সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে হবে ডাক্তার বা প্রশিক্ষিত কোন ব্যক্তির পরামর্শ গ্রহণ করতে হবে দেশে অনেকগুলো মাদকাসক্তি পুনর্বাসন কেন্দ্র রয়েছে সেখানে বিভিন্ন কাজকর্মে আসক্ত ব্যক্তিকে ব্যস্ত রেখে আস্তে আস্তে মাদকাসক্তি থেকে মুক্ত করা হয় এমন পুনর্বাসন কেন্দ্রে গেলে সবচেয়ে কার্যকর ফলাফল পাওয়া যায় তোমার কোন বন্ধু মাদকে আসক্ত হলে কিছু কিছু জিনিস চেষ্টা করে দেখতে পার তার সাথে এমন সুয় কথা বল যখন সে কোন রকম মাদক এর প্রভাবে নেই তাকে তোমার চিন্তার বিষয় বুঝিয়ে বল মাদক কীভাবে স্বাস্থ্য অর্থ ও জীবনের ক্ষতি করে তা বুঝানোর চেষ্টা কর তবে খেয়াল রাখতে হবে তোমার বন্ধু যাতে কোনভাবে উত্তেজিত না হয়ে যায় মনে রাখতে হবে মাদকাসক্ত ব্যক্তি খুব সহজেই মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ভুল কিছু করে ফেলতে পারে তোমার বন্ধু যদি তোমার সাহায্য নিতে রাজী থাকে তবে তাকে প্রশিক্ষিত ব্যক্তি বা পুনরবাসন কেন্দ্র খুজতেও সাহায্য করতে পার তবে অনেক সময় মাদকাসক্ত ব্যক্তিকে কোনভাবে কথা বলে বা কোনভাবেই সাহায্য করা যায় না এমন পরিস্থিতি হলে তোমার উচিত তোমার বন্ধুর সম্পর্ক শেষ করে দেওয়া নাহলে ভবিষ্যতে নিজের ও ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে এইচআইভি এর পূর্ণরূপ হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিএন্সি ভাইরাস এবং এইডস এর পূর্ণরূপ একুয়ারড ইমিউন ডেফিসিএন্সি সিন্ড্রম এইডস এর পূর্ণরূপ থেকে বুঝা যায় এর ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায় এইডস এর কারন হলো এইচআইভি এইচআইভি ভাইরাস দেহে প্রবেশ করলে সেটি আমাদের শ্বেতরক্তকণিকা ধ্বংস করে ফেলে ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ হ্মমতা দুর্বল হয়ে যায় এই অবস্থাকেই এইডস বলে এইডস এর ফলে বিভিন্ন সুবিধাবাদী সংক্রামক দেহে রোগ সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় যেমন ওজন হ্রাস জ্বর ডায়রিয়া ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি এইচআইভি সংক্রমনের প্রাথমিক পর্যায়ে বিশেষ কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না এই অবস্থাকে সুপ্তিকাল বলে সুপ্তিকাল ৩ মাস থেকে ১০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে তবে সুপ্তিকাল শেষ হলে দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়দুর্বল হয়ে যায় ওজন হ্রাস পায় এবং দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে থাকে এইডস এর শেষ পরিণতি হলো মৃত্যু এইচআইভি ভাইরাস দেহে প্রবেশের পর দেহের ভিতর বিভিন্ন তরল পদার্থ (যেমন রক্ত বীর্য যোনীরস বুকের দুধ) এর শ্বেতরক্তকণিকা এর ভিতর অবস্থান নেয় শ্বেতরক্তকণিকা এর ভিতর অবস্থানকালে ভাইরাসগুলো নিজেদের সংখ্যাবৃদ্ধি করতে থাকে যতক্ষন না শ্বেতরক্তকণিকা ফেটে যায় শ্বেতরক্তকণিকা ফেটে গেলে মুক্ত হওয়া ভাইরাসগুলো আবার নতুন শ্বেতরক্তকণিকা কে আক্রমন করে এবং একইভাবে ধ্বংস করে এভাবে ক্রমান্বয়ে ভাইরাস এর সংখ্যা বাড়তে থাকে এবং শ্বেতরক্তকণিকা এর সংখ্যা কমতে থাকে ফলস্বরূপ দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায় গড়ে এইচআইভি ভাইরাস দেহের ভিতর ৩ মাস পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে তবে কোন কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সুপ্তিকাল ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে সেজন্য কোন এইচআইভি আক্রান্ত রোগির সাথে সংস্পর্শের তাৎক্ষনিক পরে এইচআইভি পরীক্ষা করানো ঠিক নয় বরং ৩ মাস অপেক্ষা করে পরীক্ষা করে ডাক্তার এর পরামর্শ নেওয়া উচিৎ গড়ে এইচআইভি ভাইরাস দেহের ভিতর ৩ মাস পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে তবে কোন কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সুপ্তিকাল ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে সেজন্য কোন এইচআইভি আক্রান্ত রোগির সাথে সংস্পরশের তাৎক্ষনিক পরে এইচআইভি পরীক্ষা করানো ঠিক নয় বরং ৩ মাস অপেক্ষা করে পরীক্ষা করে ডাক্তার এর পরামর্শ নেওয়া উচিৎ হ্যা একটি নির্দিষ্ট সময় পর এইচআইভি আক্রান্ত সকল ব্যক্তির মধ্যে এইডস এর লক্ষন প্রকাশ পায় তবে এইচআইভি সংক্রমন ও এইডস এর বহিঃপ্রকাশ এর মধ্যে সময় ব্যবধান একেক ব্যক্তির জন্য একেক রকম হয় সাধারণত একজন প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি এইচআইভি সংক্রমনের পর ১০ বছর পর্যন্ত বেঁচে থাকতে পারে তবে ৫ বছরের কম বয়সী শিশুদের জন্য সেই সময়সীমা ১৩ বছর তবে একজন ব্যক্তি এইচআইভি সংক্রমনের পর কতদিন বেঁচে থাকবে তা অনেক কিছুর উপর নির্ভর করে যেমন রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা খাদ্যভ্যাস বিভিন্ন সুবিধাবাদী সংক্রামক রোগের যথাযথ ও যথা সময়ে চিকিৎসা এবং যথা সময় ও যথাযথ নিয়মে অ্যান্টিরেট্রোভাইরাল ওষুধ সেবন করা ইত্যাদি হ্যা একজন ব্যক্তিকে দেখে সুস্থ সবল মনে হলেও সে এইচআইভি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে গড়ে এইচআইভি ভাইরাস দেহের ভিতর ৩ মাস পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে তবে কোন কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সুপ্তিকাল ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে সেজন্য ভাইরাস সংক্রমনের প্রথম পর্যায়ে একজন ব্যক্তি কোন রকম লক্ষণ প্রকাশ না করলেও তার রক্তের মধ্যে এইচআইভি ভাইরাস উপস্থিত থাকে এই পর্যায় খুবই বিপদজনক কারণ এমন ব্যক্তির সাথে অন্য কোন ব্যক্তি যদি যৌন কার্যক্রমে লিপ্ত হয় তবে তার ও এইচআইভি/এইডস দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে সেজন্য একজন ব্যক্তি দেখতে সুস্থ সবল হলেও সুরক্ষা ছাড়া তার সাথে যৌন কার্যক্রম বিপদজনক হতে পারে এইচআইভি ভাইরাস বিভিন্ন ভাবে ছড়াতে পারে যেমন সুরক্ষা ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক সিরিঞ্জ এর একই সুঁই একাধিক ব্যক্তির ব্যবহার অথবা দাঁড়ি কাটার জন্য একই ক্ষুর একাধিক ব্যক্তির ব্যবহার ইত্যাদি এইচআইভি ভাইরাস দেহের ভিতর বিভিন্ন তরল পদার্থ (যেমন রক্ত বীর্য যোনীরস বুকের দুধ) এর মধ্যে অবস্থান করে সেজন্য এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ থেকে এমন কোন তরল পদার্থ যদি সুস্থ কোন ব্যক্তির শরীরে স্থানান্তর হয় তবে এইচআইভি সংক্রমনের সম্ভাবনা থাকে হ্যা বীর্যপাতের পূর্বে কোন পুরুষ তার লিঙ্গ প্রত্যাহার করে নিলেও তার সঙ্গীর অথবা তার এইডস/এইচআইভি হওার সম্ভাবনা আছে কারণ এইচআইভি ভাইরাস যোনীরস এবং বীর্য এর মধ্যে অবস্থান করে এবং খুব অল্প পরিমাণ বীর্য বা যোনীরস যদি ভুলবশত সঙ্গীর জননাঙ্গে লেগে যায় তবে তা ক্ষতিকর হতে পারে বিশেষত পুরুষ বা নারী কারো জননাঙ্গে যদি কোন প্রকার কাটা বা ক্ষত থাকে তবে খুব সহজে এইচআইভি সংক্রমন ঘটতে পারে কনডম ব্যবহার না করে এইচআইভি আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সাথে সহবাস করলে এইচআইভি সংক্রমনের সম্ভাবনা অনেক বেশি তবে সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার করে আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সাথে সহবাস করলে এইচআইভি সংক্রমনের সম্ভাবনা অনেক কমে যায় সঠিকভাবে কনডম ব্যবহারের অর্থ হলো প্রতিবার নতুন কনডম ব্যবহার করা সহবাসের আগে লিঙ্গের উপর কনডম পরে নেওয়া এবং লিঙ্গ তার দৃঢ়তা হারানোর আগে কনডম খুলে ফেলা হ্যা পায়ু সঙ্গমেও এইচআইভি/এইডস হওয়ার ভয়ঙ্কর সম্ভাবনা থাকে পায়ুপথের চামড়া অনেক নরম হয় সেজন্য যৌন মিলনের সময় পায়ুপথে ছোট কোন ক্ষত হয়ে যাওয়া অস্বাভাবিক কিছু নয় তদুপরি পায়ুপথে যোনীরসের মত কোন পিচ্ছিলকারি পদার্থ উপস্থিত থাকে না যার ফলে ক্ষত সৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে এমন কোন ক্ষুদ্র ক্ষত দিয়ে ভাইরাস খুব সহজেই দেহের ভিতর প্রবেশ করতে পারে এবং এইচআইভি সংক্রমন ঘটাতে পারে হ্যা মৌখিক সঙ্গমেও এইচআইভি/এইডস হওয়ার সম্ভাবনা থাকে যদি কোনও মহিলার মুখে বা যোনিতে ছোট কাটা বা ক্ষত থাকে বা পুরুষের মুখে বা তার লিঙ্গে ঘা থাকে তবে তারা একে অপরকে সংক্রমিত করতে পারে চূম্বনের মাধ্যমে কি এইচআইভি/এইডস সংক্রমনের সম্ভাবনা খুবই কম চুম্বনের সময় যদি শুধুমাত্র লালা বিনিময় ঘটে তাহলে এইচআইভি সংক্রমন ঘতে না তবে যদি একজন সঙ্গী বা উভয়েরই মুখে কাটা বা ঘা থাকে তবে সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় হ্যা হতে পারে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা বয়সের উপর নির্ভর করে না বরং সঙ্গীর স্বাস্থ্য এর উপর নির্ভর করে যদি সঙ্গী ইতিমধ্যে এইচআইভিতে আক্রান্ত হয় এবং তার সাথে সঙ্গম করা হয় তবে সংক্রামিত হওার সম্ভাবনা থাকে কোনও ব্যক্তি ইতিমধ্যে সংক্রামিত কিনা তা আপনি প্রায়শই জানতে পারবেন না কারণ সংক্রমণের পরে প্রথম পর্যায়ে কোনও দৃশ্যমান লক্ষণই দেখা যায় না তদুপরি অল্প বয়সী ছেলে বা মেয়েদের যৌনমিলনের জন্য প্ররোচিত করা খুব খারাপ আচরণ সবার সুরক্ষা এবং সুবিধার জন্য প্রত্যেককে কম বয়সী ছেলে বা মেয়েদের সাথে যৌন সম্পর্কে জড়িত না থাকার পরামর্শ দেওয়া হয় যদি বিবাহের আগে কোন ব্যক্তি এইচআইভি/এইডস দ্বারা সংক্রমিত থাকেন তবে বিবাহের পর তার সঙ্গীও এইচআইভি/এইডস দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে তাছাড়া বিবাহের পরেও বিভিন্নভাবে কোন ব্যক্তি এইচআইভি দ্বারা আক্রান্ত হতে পারে যেমন রক্ত স্থানান্তর অবৈধ যৌন সম্পর্ক একই সিরিঞ্জ একাধিক ব্যক্তির ব্যবহার ইত্যাদি না কাপড়ের মাধ্যমে এইডস সংক্রমনের সম্ভাবনা নেই কারণ এইচআইভি ভাইরাস বাতাসে মুক্ত অবস্থায় থাকলে কিছুক্ষনের মধ্যে ধ্বংস হয়ে যায় এবং সংক্রমন ক্ষমতা হারিয়ে ফেলে তবে স্বাস্থ্যবিধির সাধারণ নিয়মানুযায়ী সর্বদা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন কাপড় পরা উচিৎ হ্যা এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির সিরিঞ্জ বা ক্ষুর অন্য ব্যক্তি ব্যবহার করলে এইডস হওয়ার সম্ভাবনা আছে সিরিঞ্জ বা ক্ষুর এর মত ধারালো কোন বস্তু ব্যবহারের পর যদি তাতে রক্ত লেগে থাকে এবং তা পরিষ্কার অথবা জীবাণুমুক্ত না করেই যদি অন্য ব্যক্তি ব্যবহার করে তবে তার এইচআইভি/এইডস এর মত বিভিন্ন ধরনের রোগ হতে পারে সুতরাং এই জাতীয় যন্ত্রগুলি অন্য ব্যক্তির সাথে ভাগ না করা এবং প্রতিবার ব্যবহার করার পরিষ্কার এবং জীবাণুমুক্ত করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ না মশা এবং অন্যান্য পোকামাকড় এইচআইভি সংক্রমণ ঘটাতে পারে নাএইচআইভি ভাইরাসগুলি মশার শরীরে বাঁচতে পারে না কারণ এটি তাদের জন্য অনুকূল পরিবেশ নয় এইচআইভি ভাইরাসগুলি শ্বেত রক্তকণিকায় অবস্থান এবং পুনরুৎপাদন করে কিন্তু মশার দেহে কোন প্রকার শ্বেতরক্তকণিকা থাকে না ফলে এইচআইভি ভাইরাস মশার শরীরে প্রবেশের পর ধ্বংস হয়ে যায় এই সত্যটির আর একটি প্রমাণ হল মশা যদি এই রোগগুলি সংক্রমণ করতে পারত তবে আমরা সবাই এইচআইভি বহন করতাম কারণ আমরা সবাই একই পরিবেশে বসবাস করি অতএব মশার মাধ্যমে এইচআইভি বা এইডস ছড়াতে পারে না না যদি এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে খাবার গ্রহন করলে এইচআইভিতে সংক্রামিত হয় না যদি না দুইজনের মুখেই ক্ষত বা ঘা থাকে এবং কোনভাবে দুইজনের মধ্যে লালা বিনিময় হয় (যেমন একই চামচ ভাগ করে নেওয়া) তবে এই সম্ভাবনাটি এতটাই কম যে আমরা বলতে পারি এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির সাথে খাওয়ার সময় এইচআইভি সংক্রামিত হওয়ার কোন আশঙ্কা নেই সাধারণত রক্তদানের সময় এইচআইভি সংক্রমন ঘটে না যদি স্বাস্থ্যকর্মী সতর্ক হয় এবং জীবাণুমুক্ত সিরিঞ্জ এবং যন্ত্রপাতি ব্যবহার করে তবে এইচআইভি সংক্রমনের কোন সম্ভাবনা থাকে না অন্যদিকে রক্ত গ্রহনের সময় সাধারনত এইচআইভি সংক্রমনের সম্ভাবনা থাকে না কারণ রক্ত স্থানান্তরের আগে সর্বদা পরীক্ষা করে নেওয়া হয় যদি রক্তের মধ্যে এইচআইভি থাকে তবে সেই রক্ত কোনদিন স্থানান্তর করা হয় না তবে কোনভাবে এইচআইভি সংক্রমিত রক্ত যদি দেহের ভিতর প্রবেশ করে তবে অবশ্যই এইচআইভি সংক্রমনের ঝুঁকি থাকে হ্যা একজন এইচআইভি সংক্রমিত মহিলা অন্য যেকোনো মহিলার মত সন্তান বহন করতে পারে তবে এটা মনে রাখা উচিৎ যে মায়ের দ্বারা গর্ভে থাকা সন্তান এইচআইভি সংক্রমিত হতে পারে তবে এইচআইভি আক্রান্ত মায়ের সব শিশুই ভাইরাস বহন করে না কোনও শিশু আক্রান্ত হবে কিনা তা নির্ভর করে মায়ের রক্তে ভাইরাসের পরিমাণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন জিনিসের উপর গবেষণায় দেখা গেছে যে এইচআইভি আক্রান্ত মায়ের থেকে জন্ম নেওয়া তিনজনের মধ্যে দু'জন সন্তানই এইচআইভি সংক্রামিত হয় না এছাড়াও এইচআইভি পজিটিভ মা তার সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর সময় সংক্রামিত করতে পারে কারণ মায়ের বুকের দুধে এইচআইভি ভাইরাস অবস্থান করে অতএব এইচআইভি আক্রান্ত মহিলাদের পরামর্শ দেওয়া হয় বাচ্চা গ্রহন না করার এবং পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি ব্যবহার করার জন্য হ্যা এইচআইভি বা এইডস সংক্রমিত মহিলা তার সন্তান কে এইচআইভি সংক্রমন ঘটাতে পারে মায়ের দ্বারা গর্ভে থাকা সন্তান এইচআইভি সংক্রমিত হতে পারে তবে এইচআইভি আক্রান্ত মায়ের সব শিশুই ভাইরাস বহন করে না কোনও শিশু আক্রান্ত হবে কিনা তা নির্ভর করে মায়ের রক্তে ভাইরাসের পরিমাণ এবং অন্যান্য বিভিন্ন জিনিসের উপর গবেষণায় দেখা গেছে যে এইচআইভি আক্রান্ত মায়ের থেকে জন্ম নেওয়া তিনজনের মধ্যে দু'জন সন্তানই এইচআইভি সংক্রমিত হয় না এছাড়াও এইচআইভি পজিটিভ মা তার সন্তানকে দুধ খাওয়ানোর সময় সংক্রামিত করতে পারে কারণ মায়ের বুকের দুধে এইচআইভি ভাইরাস অবস্থান করে এইচআইভি এবং এইডস বিরুদ্ধে কোনও টিকা নেই তবে নির্দিষ্ট কিছু আচরণবিধি মেনে চললে এইচআইভি এবং এইডস থেকে নিরপদ থাকা যায় যেমন মাদক সেবন না করা একই সিরিঞ্জ এবং সুঁই একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার না করা একই ক্ষুর একাধিক ব্যক্তি ব্যবহার না করা এবং প্রতিবার ব্যাবহার এর পর জীবাণুমুক্ত করে ফেলা বিয়ের আগে কোন রকম শারীরিক সম্পর্কে না জড়ানো এবং শুধুমাত্র একজন সঙ্গীর সাথে সারাজীবন পার করা ও সহবাস করা ইত্যাদি এছাড়াও যেকোনো প্রকার যৌনবাহিত রোগের জন্য ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করা এবং তাৎক্ষনিক চিকিৎসাসেবা গ্রহণ করা উচিৎ না কোন কুমারী এর সাথে সহবাস করে আপনি এইচআইভি বা এইডস থেকে নিরাময় পাবেন না এইচআইভি সংক্রমনের কোন প্রতিকার নেই এছারাও যদি আপনি কোন যৌন সংক্রামক রোগ বহন করেন এবং কুমারীর সাথে অনিরাপদ যৌন মিলন করেন তবে আপনি তার স্বাস্থ্য এবং জীবনকে ঝুকির সম্মুখীন করে ফেলছেন এইচআইভি আক্রান্ত হলে শুধুমাত্র রক্তপরীক্ষা দ্বারা নিশ্চিত হওয়া যায় এটা মনে রাখা জরুরী গড়ে এইচআইভি ভাইরাস দেহের ভিতর ৩ মাস পর্যন্ত সুপ্ত অবস্থায় থাকতে পারে তবে কোন কোন ব্যক্তির ক্ষেত্রে এই সুপ্তিকাল ১০ বছর পর্যন্ত হতে পারে সেজন্য কোন এইচআইভি আক্রান্ত রোগির সাথে সংস্পরশের তাৎক্ষনিক পরে এইচআইভি পরীক্ষা করানো ঠিক নয় বরং ৩ মাস অপেক্ষা করে পরীক্ষা করে ডাক্তার এর পরামর্শ নেওয়া উচিৎ এবং হাসপাতালে রক্তপরীক্ষা করা উচিৎ সকল সরকারি মেডিকেল কলেগ ও হাসপাতাল ডায়াগনস্টিক সেন্টার বিভিন্ন সরকারি সংস্থা (যেমন আইসিডিডিআরবি) ইত্যাদি জায়গায় এইচআইভি পরীক্ষা করা হয়ে থাকে এক্ষেত্রে অবশ্যই হতাশ না হওয়া এবং আশা রাখা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ নিয়মিত পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুমের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে এইচআইভি দ্বারা আক্রান্ত হলে ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ফলে বিভিন্ন সুবিধাবাদী সংক্রামক রোগ যেমন ডায়রিয়া যক্ষ্মা মুখে ঘা নানা প্রকার চর্মরোগ নিউমোনিয়া প্রচন্ড জ্বর ইত্যাদি আক্রমন করে তখন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মত ঔষধ সেবন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে এইডস থেকে সেরে উঠার যদিও কোন চিকিৎসা এখনও বের হয়নি তবে এন্টিরেট্রোভাইরাল জাতীয় ঔষধের মাধ্যমে অনেকটা সুস্থ থাকা যায় জীবন দীর্ঘায়িত করা যায় এইচআইভি পরীক্ষায় ভুল ফলাফল আসার সম্ভাবনা খুবই কম যদি না সংক্রমনের প্রথম ৩ মাসের মধ্যে পরীক্ষা করা হয় কারণ এইচআইভি সংক্রমনের প্রথম ৩ মাস ভাইরাস গুলো সুপ্ত অবস্থায় থাকে যার ফলে অনেক সময় পরীক্ষায় ধরা পরে না একজন এইচআইভি বা এইডস আক্রান্ত ব্যক্তির জন্য আমাদের সহায়তা ও পরামর্শ সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন একজন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তি অন্য যেকোন অসুস্থ ব্যক্তির মতই শুধুমাত্র এই রোগের কোন নিরাময় নেই সেজন্য তার সাথে সহমর্মিতাপূর্ণ আচরণ করলে তার অসুখের বোঝা কিছুটা হালকা হবে এইচআইভি এবং এইডসযুক্ত ব্যক্তিদের জন্য উপযুক্ত যত্ন খুব গুরুত্বপূর্ণ অসুস্থ ব্যক্তির পুষ্টিকর খাবার গ্রহণ পর্যাপ্ত বিশ্রাম ও ঘুমের দিকে লক্ষ্য রাখতে হবে তার কাপড়চোপড় বাসা এবং ব্যবহার্য জিনিসপত্র পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে সে যদি অন্য কোন রোগে আক্রান্ত হয়ে যায় তবে তাৎক্ষনিক চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে এবং সকল ভারি কাজে সাহায্য করতে হবে সবসময় মনে রাখতে হবে যে তোমার বন্ধু বা আত্মীয় কেউ এইচআইভি আক্রান্ত হলেও সে তোমার আপনজন এবং সে তোমার কাছেই সহযোগিতা আশা করে সাধারনত এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির পরিচর্যা করলে সংক্রমনের সম্ভাবনা থাকে না তবুও সতর্কতার জন্য কিছু কিছু পদক্ষেপ নেওয়া যায় যেমন এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির ক্ষত পরিষ্কার করলে প্লাস্টিক গ্লভস ব্যবহার করা উচিত এবং ক্ষত সবসময় কাপড় বা প্লাস্টার দিয়ে ঢেকে রাখা উচিত অসুস্থ ব্যক্তির ব্যবহৃত যন্ত্রপাতি (যেমন ক্ষুর সিরিঞ্জ) আলাদা জায়গায় রাখা উচিত এবং অন্য কারো ব্যবহার না করা উচিত এই ব্যবস্থাগুলি গুরুত্বপূর্ণ যাতে এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির পরিচর্যা করতে গিয়ে অন্য ব্যক্তি সংক্রমিত না হয় রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দেহ কে বিভিন্ন রোগ থেকে সুরক্ষা প্রদান করে রক্তের শ্বেতরক্তকনিকা দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে দেহে কোন ভাইরাস ব্যাকটেরিয়া বা প্যারাসাইট প্রবেশ করলে শ্বেতরক্তকণিকা ফ্যাগসাইটসিস প্রক্রিয়ায় এদেরকে ধ্বংস করে এবং দেহকে সুরক্ষা প্রদান করে এখনো এর সঠিক উত্তর জানা নেই অনেকে মনে করে বানর থেকে মানুষের মধ্যে প্রথম এইচআইভি ভাইরাস এর বিস্তার ঘটে এইচআইভি শব্দের পূর্ণরূপ হলো হিউম্যান ইমিউনো ডেফিসিএন্সি ভাইরাস এইচআইভি ভাইরাস দেহে প্রবেশ করলে সেটি আমাদের শ্বেতরক্তকণিকা ধ্বংস করে ফেলে ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ হ্মমতা দুর্বল হয়ে যায় এইডস শব্দের পূর্ণরূপ হলো একুয়ারড ইমিউন ডেফিসিএন্সি সিন্ড্রম এইডস এর পূর্ণরূপ থেকে বুঝা যায় এর ফলে রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল হয়ে যায় এইডস এর কারন হলো এইচআইভি এইচআইভি ভাইরাস দেহে প্রবেশ করলে সেটি আমাদের শ্বেতরক্তকণিকা ধ্বংস করে ফেলে ফলে দেহের রোগ প্রতিরোধ হ্মমতা দুর্বল হয়ে যায় এই অবস্থাকেই এইডস বলে এইডস এর ফলে বিভিন্ন সুবিধাবাদী সংক্রামক দেহে রোগ সৃষ্টি করে এবং বিভিন্ন সমস্যা দেখা দেয় যেমন ওজন হ্রাস জ্বর ডায়রিয়া ত্বকের সমস্যা ইত্যাদি এইচআইভি সংক্রমনের প্রাথমিক পর্যায়ে বিশেষ কোন লক্ষণ প্রকাশ পায় না এই অবস্থাকে সুপ্তিকাল বলে সুপ্তিকাল ৩ মাস থেকে ১০ বছর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে তবে সুপ্তিকাল শেষ হলে দেহের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়দুর্বল হয়ে যায় ওজন হ্রাস পায় এবং দুর্বল রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার জন্য বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হতে থাকে এইডস এর শেষ পরিণতি হলো মৃত্যু এইচআইভি ভাইরাস বিভিন্ন ভাবে ছড়াতে পারে যেমন সুরক্ষা ছাড়া শারীরিক সম্পর্ক সিরিঞ্জ এর একই সুঁই একাধিক ব্যক্তির ব্যবহার অথবা দাঁড়ি কাটার জন্য একই ক্ষুর একাধিক ব্যক্তির ব্যবহার ইত্যাদি এইচআইভি ভাইরাস দেহের ভিতর বিভিন্ন তরল পদার্থ (যেমন রক্ত বীর্য যোনীরস বুকের দুধ) এর মধ্যে অবস্থান করে সেজন্য এইচআইভি আক্রান্ত ব্যক্তির দেহ থেকে এমন কোন তরল পদার্থ যদি সুস্থ কোন ব্যক্তির শরীরে স্থানান্তর হয় তবে এইচআইভি সংক্রমনের সম্ভাবনা থাকে না গর্ভনিরোধক বড়ি একজন মহিলা কে এইচআইভি/এইডস থেকে সুরক্ষা দিতে পারে না এইচআইভি ভাইরাস দেহের বিভিন্ন তরল (যেমন রক্ত বীর্য যোনীরস ইত্যাদি) এর মধ্যে অবস্থান করে এইচআইভি আক্রান্ত কোন ব্যক্তির সাথে যৌন মিলন করলে বীর্য যোনীরসের বিনিময় ঘটে যার ফলে এইচআইভি সংক্রমণ হতে পারে যেহেতু গর্ভনিরোধক বড়ি এইচআইভি এর বিরুদ্ধে কোন প্রকার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা গড়ে তুলতে পারে না আবার বীর্য বা যোনীরসের বিনিময়েও কোন বাধা দিতে পারে না তাই গর্ভনিরোধক বড়ি এইচআইভি/এইডস থেকে সুরক্ষা দিতে পারে না লাল ফিতা এইচআইভি / এইডস এর অস্তিত্বের লক্ষণ এবং এই রোগের বিরুদ্ধে লড়াইয়ের জন্য অন্যদের সাথে একত্রিত হওয়ার আহ্বান বাংলাদেশের জনসংখ্যার ০১ শতাংশেরও কম এইচআইভি আক্রান্ত বলে ধারণা করা হচ্ছে বাংলাদেশ একটি কম এইচআইভিপ্রসারিত দেশ না এইডস রোগের কোন চিকিৎসা আজ পর্যন্ত আবিষ্কৃত হয় নি এইডস দ্বারা আক্রান্ত হলে ধীরে ধীরে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় ফলে বিভিন্ন সুবিধাবাদী সংক্রামক রোগ যেমন ডায়রিয়া যক্ষ্মা মুখে ঘা নানা প্রকার চর্মরোগ নিউমোনিয়া প্রচন্ড জ্বর ইত্যাদি আক্রমন করে তখন অভিজ্ঞ ডাক্তারের পরামর্শ মত ঔষধ সেবন ও প্রয়োজনীয় চিকিৎসা নিতে হবে এইডস থেকে সেরে উঠার যদিও কোন চিকিৎসা এখনও বের হয়নি তবে এন্টিরেট্রোভাইরাল জাতীয় ঔষধের মাধ্যমে অনেকটা সুস্থ থাকা যায় জীবন দীর্ঘায়িত করা যায় নিরাপদ যৌন মিলন বলতে বুঝায় কোন অপরিকল্পিত গর্ভাবস্থা যৌন রোগ বা এইচআইভি / এইডসের ঝুঁকিবিহীন যৌন মিলন সাধারণত কনডম ব্যবহার করে নিরাপদ যৌন মিলন নিশ্চিত করা হয় তবে দুইজন সঙ্গী যদি সকল প্রকার যৌনবাহিত রোগ হতে মুক্ত থাকে তাহলে অন্য ব্যবস্থাও গ্রহণ করা যায় যেমন জন্মনিরোধক বড়ি বন্ধ্যাকরন মেয়েদের মাসিক চক্রের সময় সহবাস ইত্যাদি গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা বিভিন্ন রকমের হতে পারে যেমন কনডম গর্ভনিরোধক বড়ি অপারেশন এর মাধ্যমে ছেলেদের শুক্রনালী অথবা মেয়েদের ফ্যালোপিয়ান টিউব বন্ধ করে দেওয়া ইত্যাদি চিকিৎসাবিজ্ঞানের এসকল পদ্ধতি ছাড়াও প্রচলিত কিছু পদ্ধতি আছে যেমন বীর্যপাতের আগে পুরুষের লিঙ্গ নারীর যোনী থেকে বের করে ফেলা অথবা মেয়েদের মাসিক চক্রের সময় সহবাস করা ইত্যাদি কনডম হল এক প্রকার রাবার টিউব যা এক প্রান্তে বন্ধ রয়েছে পুরুষ এবং মহিলাদের জন্য দুই ধরণের কনডম পাওয়া যায় পুরুষ কনডমগুলি যোনিতে প্রবেশের আগে শক্ত লিঙ্গের উপরে স্থাপন করা হয় মহিলা কনডম যৌন মিলনের আগে যোনিতে স্থাপন করা হয় তবে যৌন মিলনের সময় উভয় সঙ্গীর কনডম ব্যবহারের প্রয়োজন নেই একজন ব্যবহার করলেই যথেষ্ট পুরুষদের জন্য অপারেশন এর মাধ্যমে শুক্রনালীগুলো কেটে বন্ধ করে দেওয়া হয় যাতে শুক্রাণু বীর্যের সাথে মিশ্রিত হতে না পারে এই অপারেশনের পরে যদি কোনও পুরুষ যৌন মিলন করে তবে তার বীর্যপাত ঘটতে পারে তবে বীর্যে কোনও শুক্রাণু থাকে না মহিলাদের জন্য ডিম্বাণু যাতে জরায়ুতে পৌঁছতে না পারে সে জন্য ডিম্বনালীগুলো কেটে বন্ধ করে দেওয়া হয় এই অপারেশনের পরে মহিলাদের যথারীতি মাসিকচক্র চলতে থাকবে তবে জরায়ুতে কোন ডিম্বাণু স্থাপন হতে পারে না ফলে ডিম্বাণু এর সাথে শুক্রাণু মিলিত হতে পারে না মহিলাকে প্রতিদিন একটি করে বড়ি গ্রহণ করতে হবে এমনকি যেই দিনগুলিতে যৌন মিলন করে না সে দিনগুলিতেও তবে গর্ভনিরোধক বড়ির অনেক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থাকে সেজন্য অবশ্যই ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত যৌন মিলন শুরু করার শুরু থেকেই গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত গর্ভনিরোধক ব্যবস্থা গ্রহণ করলে বিশেষত কনডম ব্যবহার শুরু করলে অযাচিত গর্ভাবস্থা এবং বিভিন্ন যৌনবাহিত রোগ থেকে মুক্ত থাকা যায় সাধারণত মাসিক হওয়ার ১৪ দিন আগে একটি ডিম্বাণু মুক্ত হয় এবং ফ্যালপিয়ান নালীপথে জরায়ু এর দিকে আসতে থাকে এইসময় যদি কোন শুক্রাণু এর সাথে ডিম্বাণু মিলিত হয় তবে মেয়েটি গর্ভবতী হয়ে যায় একজন মেয়ে যদি এই সময় যৌন মিলন থেকে বিরত থাকে তাহলে সে গর্ভবতী হওয়া এড়িয়ে যেতে পারে তবে কিশোরীদের জন্য মাসিক চক্র কিছুটা অনিয়মিত হয় এবং সেজন্য কখনও নিশ্চিত জানা যায় না যে কবে ডিম্বাণু মুক্ত হয়েছে এবং কবে যৌন মিলন নিরাপদ এছাড়াও মানসিক চাপ দুঃখ ভ্রমণ এর জন্যে মাসিক চক্রে পরিবর্তন আসতে পারে সেজন্য কিশরীরা এই পদ্ধতি অবলম্বন করে নিশ্চিত গর্ভাবস্থা এড়াতে পারে না না গর্ভনিরোধক বড়ি ব্যবহারের সাথে পেটে আলসার হওয়ার কোন সম্পর্ক নেই যদি কোন মহিলার আলসার হয়েও থাকে তবে তা ভিন্ন কোন কারণে হতে পারে যেমন মানসিক চাপ চর্বিযুক্ত এবং মসলাদার খাবার খাওয়া পরিবারে পেটে আলসার হওয়ার ইতিহাস থাকা ইত্যাদি হ্যাঁ সম্ভব গর্ভনিরোধক বড়ি ডিম্বাণু কে পরিপক্ব হতে বাধা দেয় সেজন্য বড়ি গ্রহণ করা বন্ধ করে দিলে ডিম্বাণু পরিপক্ব হতে পারে এবং আপনি গর্ভবতী হতে পারবেন তবে বড়ি গ্রহণ বন্ধ করার পর আবার নতুন করে ডিম্বাণু তৈরি হতে কিছুটা সময় লাগে কারো কারো ক্ষেত্রে ১২ মাস পর্যন্ত সময় লাগতে পারে সেটা নির্ভর করে কোন প্রতিষ্ঠানের তৈরীকৃত বড়ি গ্রহণ করা হচ্ছে কিছু বড়ি আছে মাসে ২১ দিন গ্রহণ করতে হয় এবং কিছু আছে যেগুলো প্রতিদিনই গ্রহণ করতে হয় সেজন্য গর্ভনিরোধক বড়ি গ্রহনের আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত সকল গর্ভনিরোধক পদ্ধতির কিছু সুবিধা ও অসুবিধা আছে যেমন গর্ভনিরোধক বড়ি প্রতিদিন গ্রহণ করতে হয় এবং কোনদিন গ্রহণ করতে ভুলে গেলে গর্ভবতী হওয়ার সম্ভাবনা আছে গর্ভনিরোধক ইঞ্জেকশান ব্যবহার করলে প্রতি ২৩ মাসে ১ বার করে নিতে হয় এবং নেওয়া বন্ধ করে দেওয়ার পর পুনরায় ডিম্বাণু তৈরি হতে কিছু সময় লাগে তবে যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধে এগুলো কোন ভূমিকা রাখতে পারে না অন্যদিকে কনডম যেমন গর্ভনিরোধ করতে পারে একইভাবে যৌনবাহিত রোগ থেকে সুরক্ষা দিতে পারে অতএব যেকোন পদ্ধতি অবলম্বনের আগে ডাক্তার এর পরামর্শ গ্রহণ করা উচিত কনডম ব্যবহার এর আগে নিশ্চিত হয়ে নিতে হবে যে কনডম এর মধ্যে কোন ছিদ্র বা চিড় নেই এবং কনডম এর মেয়াদ এখনও উত্তীর্ণ হয়নি ব্যবহার এর জন্য পুরুষের লিঙ্গ যখন উত্থিত হয় তখন সাবধানে প্যাকেট থেকে কনডম বের করে শক্ত লিঙ্গের উপর পড়িয়ে দিতে হবে খেয়াল রাখতে হবে যাতে ভেতরে কোন বায়ু প্রবেশ করতে না পারে লিঙ্গ যোনী থেকে বের করে আনার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে কনডম খুলে না যায় এবং বের করে আনার পর লিঙ্গ শক্ত থাকা অবস্থায় কনডমটি খুলে ফেলতে হবে কনডম বিভিন্ন আকার এর হতে পারে স্বাভাবিক আকৃতির কনডম গড়পড়তা সকল প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের লিঙ্গেই স্থাপন করা যায় তবে কিশোরদের জন্য পরিস্থিতি কিছুটা ভিন্ন অনেক ক্ষেত্রেই দেখা যায় স্বাভাবিক আকৃতির কনডম কিশোরদের লিঙ্গের থেকে অনেক বড় হয়ে যায় সেজন্য তাদের জন্য কনডম ব্যবহার ফলপ্রসূ হয় না হ্যাঁ সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার না করলে ফেটে যেতে পারে কনডম লিঙ্গের উপর স্থাপন করার সময় খেয়াল রাখতে হবে যাতে ভেতরে কোন বায়ু প্রবেশ করতে না পারে এছাড়াও অনেকে কনডম এর উপর নানা পিচ্ছিলকারী পদার্থ (যেমন ভ্যাসলিন) ব্যবহার করে যা মোটেও ঠিক নয় এতে করে কনডম এর স্থায়িত্ব কমে যায় এগুলো খেয়াল রেখে সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার করলে ফেটে যাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম না বীর্য কখনও কনডমের ভিতর দিয়ে অতিক্রম করতে পারে না এজন্য গর্ভাবস্থা ও যৌনবাহিত রোগ প্রতিরোধে কনডম অনেক কার্যকর ভূমিকা পালন করে লুব্রিক্যান্টটি কনডম এর স্থায়িত্বের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এটি একটি বিশেষ রকমের লুব্রিক্যান্ট যা ব্যবহারের আগে পর্যন্ত কনডম এর গুণ ধরে রাখতে সাহায্য করে এটি না থাকলে কনডমের স্থিতিস্থাপকতা কমে যেত এটি মানুষের জন্য মোটেও ক্ষতিকারক নয় অনেকের এই লুব্রিক্যান্ট এর জন্য হালকা চুলকানি অনুভব হয় তবে সেটা তেমন কিছু না সহবাসের পর যৌনাঙ্গ ধুয়ে ফেললে সেই অনুভূতি আর থাকবে না এটি সম্পূর্ণভাবে ব্যক্তিগত অভিমত এর উপর নির্ভর করে কিছু মহিলা নিরাপত্তার জন্য কনডমসহ সহবাস করতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে কেউ কনডম ছাড়া বেশি আনন্দ উপভোগ করে না সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার করলে যৌনবাহিত রোগ হতে পারে না যৌনবাহিত রোগের ভাইরাস বীর্যযোনীরস অথবা জননাঙ্গে ক্ষতস্থানে অবস্থান করে যেহেতু বীর্য কনডম ভেদ করে যোনীতে যেতে পারে না এবং কনডম জননাঙ্গের ক্ষতস্থানকেও আবৃত করে রাখে সেজন্য কনডম ব্যবহারে যৌনবাহিত রোগে সংক্রমিত হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায় মিলনের সময় কনডম পুরুষ লিঙ্গে পরা হয় যেন বীর্য সঙ্গীর যোনীতে প্রবেশ করতে না পারে কনডমটি পরতে হবে যখন পুরুষ লিঙ্গ উত্তেজিত থাকবে এবং সঙ্গীর দেহে প্রবেশ করার পুর্বে অনাকাঙ্খিত গর্ভাবস্থা সৃষ্টি অথবা যৌন বাহিত সংক্রমণ এরাতে এটি ব্যাবহার করা হয় মিলনের সময় কনডম পুরুষ লিঙ্গে পরা হয় যেন বীর্য সঙ্গীর যোনীতে প্রবেশ করতে না পারে কনডমটি পরতে হবে যখন পুরুষ লিঙ্গ উত্তেজিত থাকবে এবং সঙ্গীর দেহে প্রবেশ করার পুর্বে অনাকাঙ্খিত গর্ভাবস্থা সৃষ্টি অথবা যৌন বাহিত সংক্রমণ এরাতে এটি ব্যাবহার করা হয় বীর্যপাতের সময় পুরুষ লিঙ্গ যখন উত্তেজিত অবস্থায় থাকবে তখন কনডমকে ঠিক জায়গায় ধরে রেখে সম্পুর্ন লিঙ্গ সঙ্গীর যোনী থেকে বের করে আনুন আপনি তখনি কনডম বের করে আনবেন যখন আপনার লিঙ্গের সাথে সঙ্গীর দেহের কোন স্পর্শ না থাকে কনডমটিকে টিস্যুতে করে ডাস্টবিনে ফেলুন কমডে ফ্লাশ করবেন না তাতে সেটির পথ বন্ধ হয়ে যেতে পারে কনডম কখন ধুয়ে পুনঃব্যবহার করা যায়না কনডম কখনো একবারের বেশি দুইবার ব্যবহার করা যায়না কনডম ব্যবহার করে সেটি ফেলে দেবে এটি ছেলে এবং মেয়ে উভয় ধরনের কনডমের ক্ষেত্রে সত্য ৩০ মিনিট পরই কনডম পরিবর্তন করা উচিত কেননা কনডম দুর্বল হয়ে যায় সঠিকভাবে ব্যবহার করলে কনডম এইচআইভি প্রতিরোধে সর্বোত্তম প্রতিরক্ষা প্রদান করে সেই সাথে এটি অন্যান্য যৌনবাহিত সংক্রমণ (এসটিআই) প্রতিরোধ করে অযাচিত গর্ভাবস্থা রোধ করতেও কনডম সহায়তা করে যদিও অধিকাংশ নারী অনিচ্ছায় গর্ভবতী হওয়া ও যৌনবাহিত রোগ উভয় থেকে নিরাপদ থাকার জন্য কনডমের পাশাপাশি জন্মবিরতির অন্যান্য নির্ভরযোগ্য পদ্ধতিও গ্রহণ করেন কনডমের মধ্যে কোনো ক্ষুদ্র ছিদ্র উপস্থিত থাকে না নার্কোলেপ্সি এমন একটি রোগ যা আপনার মস্তিষ্কের ঘুম থেকে ওঠা চক্রের নিয়ন্ত্রণযুক্ত ক্ষমতায় বাধা সৃষ্টি করে একটি ব্যক্তি জেগে উঠার পরে বিশ্রান্ত বোধ করতে পারেন কিন্তু পরে সারা দিন ধরে নিদ্রালু অনুভব হয় জানা যায় যে এই রোগটির দ্বারা প্রতি 2000 জনের মধ্যে 1 জন নারী বা পুরুষ উভয়েই সমানভাবে প্রভাবিত হতে পারেন এটি দৈনিক কাজকর্মে বাধা সৃষ্টি করে এবং ব্যক্তিটি গাড়ী চালানো খাওয়া ও কথা বলা ইত্যাদির মাঝেও ঘুমিয়ে পড়তে পারেন যদিও নার্কোলেপ্সি হওয়ার সঠিক কারণ অজানা তবুও একাধিক কারণগুলিকে নার্কোলেপ্সি ঘটার জন্য দায়ী বলে মনে করা হয় নার্কোলেপ্সির সাথে ক্যাটাপ্লেক্সি যুক্ত প্রায় সমস্ত ব্যক্তিদের শরীরে হাইপোক্রেটিন নামক রাসায়নিকটি অতি স্বল্প মাত্রায় থাকে যা অনিদ্রা ঘটায় আবার ক্যাটাপ্লেক্সি ছাড়া নার্কোলেপ্সি যুক্ত ব্যক্তিদের হাইপোক্রেটিনের স্বাভাবিক মাত্রা থাকেকম হাইপোক্রেটিনের মাত্রা থাকা ছাড়া নার্কোলেপ্সি হওয়ার অন্যান্য বিষয়গুলি হলমস্তিষ্কে আঘাত নার্কোলেপ্সির একটি পারিবারিক ইতিহাস অটোইমিউন অসুখ ব্যক্তির চিকিৎসার ইতিহাস নিয়ে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করার পর চিকিৎসক রোগটি নির্ণয় করতে যে দুটি বিশেষ পরীক্ষা পদ্ধতি করতে দিতে পারেন তা হলপলিসোম্নগ্রাম এটি সারারাত ধরে চলা শ্বাসপ্রশ্বাস চোখের নড়াচড়া ও মস্তিষ্ক এবং পেশীর গতিবিধির একটি ফলাফল দেয় অসংখ্য ঘুমের সুপ্তাবস্থা পরীক্ষা এই পরীক্ষার মাধ্যমে দেখা হয় যে একজন ব্যক্তি কাজের মাঝখানে ও দিনে কতবার ঘুমাতে পারেনযদিও নার্কোলেপ্সির সেরকম কোন প্রতিকার নেই জীবনযাপনের পরিবর্তন ও ওষুধগুলি উপসর্গগুলিকে নিয়ন্ত্রণ করতে এবং অবস্থাটিকে ভাল করতে সাহায্য করে সাধারণত চিকিৎসক অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস অ্যাম্ফিটামিনের মত উত্তেজক ওষুধগুলি ব্যবহারের পরামর্শ দিয়ে থাকেননীচে দেওয়া জীবনযাত্রা পরিবর্তনের ফলে নার্কোলেপ্সির বিরুদ্ধে কিছু সাহায্য পাওয়া যেতে পারেনিয়মিত ব্যায়াম হালকা কিছুক্ষণ ঘুমানো ঘুমাতে যাওয়ার আগে মদ্যপান বা ক্যাফিন এড়িয়ে চলা ধূমপান এড়িয়ে চলা বিছানায় যাওয়ার আগে শান্ত হওয়া ঘুমাতে যাওয়ার আগে ভারী বা বেশি খাবার খাওয়া এড়িয়ে চলা মেনিয়া বা ম্যানিয়া এমন একটি অবস্থা যাতে আপনি শারীরিক ও মানসিকভাবে অত্যন্ত সক্রিয় অনুভব করেন যা দৈনন্দিন জীবনযাপনের উপর গুরুত্বপূর্ণ প্রভাব ফেলে মেনিয়া বা উন্মত্ত মানসিকতার পর্ব সাধারণত একসপ্তাহ বা তার বেশি সময় ধরে থাকে এবং এটি হাইপোমেনিয়ার একটি গুরুতর আকার এটি একটি উপসর্গ যা সাধারণত বাইপোলার ডিসর্ডার পোস্টপার্টাম সাইকোসিস এবং এরকম অন্যান্য রোগে আক্রান্ত মানুষের মধ্যে দেখা যায় যেখানে মেজাজ চরম পর্যায়ে থাকে (অত্যধিক উঁচুতে অথবা অত্যধিক তলানিতে অনুভব হয়) এই সমস্ত মানুষের মধ্যে মেনিয়া প্রায়শই বিষণ্নতায় পরিবর্তিত হয়ভারতে বাইপোলার রোগের ব্যাপকতা 01 শতাংশ হার সহ পুরুষদের মধ্যে উচ্চমাত্রায় হতে দেখা যায় ভারতের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য সমীক্ষা 201516 অনুযায়ী 4049 বছর বয়সী ব্যক্তিদের মধ্যে বাইপোলার রোগ সংক্রান্ত ঘটনারই সর্বাধিক তথ্য পাওয়া গিয়েছিল উন্মত্ত মানসিক অবস্থার ঘটনাপর্ব চলাকালীন আপনি যে সমস্ত কাজকর্ম করবেন অথবা উপলব্ধি করবেনঅত্যন্ত খুশি উদ্দীপনা ধরে রাখতে অক্ষম অত্যধিক সক্রিয় খুব দ্রুত কথা বলা বা চিন্তাভাবনা করা ঘুমোতে অথবা খেতে অনিচ্ছুক সহজেই বিভ্রান্ত হওয়া সহজেই বিরক্ত হওয়া এবং রেগে যাওয়া বিশেষ ক্ষমতার অধিকারী মনে হওয়া অন্তর্দৃষ্টির অভাব অমূলক চিন্তাভাবনা এবং ধারণা পোষণঘটনাপর্বের পর আপনার হয়ত বা মনে থাকবে যে কি ঘটেছিল এবং নিজের কর্মকাণ্ড ও কথাবার্তার জন্য বিব্রতবোধ হতে পারে আপনি ক্লান্তি এবং ঘুমও অনুভব করবেন মেনিয়ার সম্ভাব্য কারণগুলি হলবাইপোলার রোগ মানসিক চাপ জিনগত কারণ ঋতুর পরিবর্তন নির্দিষ্ট ওষুধ অথবা অ্যালকোহলের ব্যবহার স্নায়ুর কার্যকারিতায় অস্বাভাবিকতা নির্দিষ্ট কিছু রোগের অবস্থার অন্তিম পর্যায়ের প্রকাশ প্রসবাবস্থা প্রিয়জনকে হারানো বিবাহবিচ্ছেদ হিংসাত্মক অবমাননাকর বেকারত্ব আর্থিক সমস্যার মতো ঘটনা মেনিয়ার চিকিৎসায় আপনার চিকিৎসক (মনোরোগ বিশেষজ্ঞ) বিশেষভাবে সাহায্য করতে পারেন মেনিয়া সৃষ্টি করতে এমন সমস্ত অন্যান্য কারণের সম্ভাবনা দূর করার জন্য তিনি আপনার চিকিৎসাগত ও ব্যক্তিগত ইতিহাস জিজ্ঞাসা করবেন ইতিহাস জেনে নিলে কোনও সাম্প্রতিক দুঃখজনক ঘটনা চিহ্নিত এবং আপনার মানসিক স্বাস্থ্যের মূল্যায়ন করতে সহায়তা করবেমেনিয়া বা ম্যানিয়ার ব্যবস্থাপনায় সাধারণত অ্যান্টিসাইকোটিক্স দেওয়া হয় বাইপোলার রোগ সম্পর্কিত মেনিয়ার ক্ষেত্রে মুড স্টেবিলাইজার দেওয়া হয় ক্ষতিকারক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলি প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজন হয় (অথবা কিছু মুড স্টেবিলাইজার ওষুধ) ওষুধের পাশাপাশি সাইকোথেরাপি (যা ধরণ চিহ্নিত করতে সহায়তা করে বর্তমানে ভালোভাবে বাঁচতে উৎসাহিত করে বা সমস্যার সমাধান করে) এবং পরিবার ও বন্ধুবান্ধবদের কাছ থেকে সমর্থন দুর্দান্তরকম সহায়ক হতে পারে পুরুষদের হাইপোগোনাডিজম একটা দশা যেখানে টেস্টোস্টেরন হরমোনের (এই হরমোনটি পুরুষদের বয়ঃসন্ধিতে তাদের শারীরীক বৃদ্ধি ও গঠনে সাহায্য করে) মাত্রা কম থাকে কারণ শরীর যথেষ্ট মাত্রায় এই হরমোন সৃষ্টি করতে পারে না এই ব্যাধিতে প্রভাবিত ব্যাক্তির উপর এই দশা অনেক বড় প্রভাব ফেলে এটা একটা যৌণ হরমোন হওয়া ছাড়াও টেস্টোস্টেরন গম্ভীরভাবে দায়ী থাকে যৌনতা জ্ঞানীয় ও শরীরের অন্যান্য ক্রিয়ার জন্য (এর অন্তর্গত মস্তিষ্ক বিপাকীয় ক্রিয়া এবং ভাস্কুলার সিস্টেম) এবং উন্নতির জন্যহাইপোগোনাডিজম দুই প্রকারের হয় যেমন প্রাথমিক (টেস্টিকলসে) এবং গৌন (হাইপোথ্যালামাস এবং পিটুইটারী গ্রন্থিতে) হাইপোগোনাডিজমের প্রধান লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো হলোরক্তাল্পতা পেশী নষ্ট হাড়ের ঘনত্ব বা হাড়ে খনিজ কমে যাওয়া বা অস্টিওপোরোসিস পেটে চর্বি গরম আকস্মিক প্রবাহ শরীরে লোম কমে যাওয়া এপিফিজিল ক্লোজার দেরী হওয়া গাইনীকোমাস্টিয়া যৌনগত কর্মহীনতা যার অন্তর্গত সোজা হতে অক্ষম শক্তি মনোবল লিবিডো পেনাইল সংবেদনশীলতা বা বীর্যগননা কম হওয়া প্রচন্ড উত্তেজনার লক্ষে পৌঁছাতে অক্ষম ছোট টেস্টেস হতাশা বা বিরক্তি বাড়া মনোযোগে অসুবিধা কোলেস্টেরলের মাত্রায় পরিবর্তন এই ব্যাধির উপসর্গের উপর নির্ভর করে চিকিৎসকের দ্বারাই এর নির্ণয় সম্ভব হয় এবং নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলোর পরামর্শ দেওয়া হয়হরমোনের পরীক্ষা সেরাম টেস্টোস্টেরন বা মুক্ত টেস্টোস্টেরন গৌন হাইপোগোনাডিজমের জন্য সেরাম লিউটেনাইজিং হরমোন (এলএইচ) এবং ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (এফএসএইচ) বীর্য বিশ্লেষণ পিটুইটারী ইমেজিং টেস্টিকিউলার বায়োপসি জিনগত পরীক্ষাচিকিৎসার প্রথম পর্ব হলো টেস্টোস্টেরন বদলানোর চিকিৎসা যেটা অবশ্যই 300800 এনজি/ডিএল টেস্টোস্টেরন সরবরাহ করে এটা এইরকম হতে পারেএকটা ট্রান্সডারমাল প্যাচ যেটা 24 ঘন্টা সময়ে অনবরত টেস্টোস্টেরন সরবরাহ করে বাক্কাল টেস্টোস্টেরন গুলি যেটা টেস্টোস্টেরনের পালসাটাইল মুক্তিতে ব্যবহৃত হয় একটা ইমপ্ল্যান্টেবল পেলেট যেটা অস্ত্রোপচারে স্থাপিত হয় ধীরগতিতে নিঃসরণ ঠিক করার জন্য টপিকাল জেল যেটা ব্যবহার করা হয় দীর্ঘস্থায়ী সেরাম টেস্টোস্টেরনের উপরে ওঠানোর জন্য ইন্ট্রামাস্কুলার ইন্জেক্সন ব্যবহৃত হয় দীর্ঘকালীল শোষনের জন্য যেটা তেলের মধ্যে ডোবানো থাকে মৌখিক টেস্টোস্টেরন গুলি বর্তমানে ভারতে পাওয়া যায় না কুষ্ঠ বা হ্যানসেন রোগটি ম্যাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপরের কারণে সৃষ্ট ত্বক এবং স্নায়ুর সংক্রমণ বিশেষ এই অবস্থায় ত্বক শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি পেরিফেরাল স্নায়ু চোখ এবং শ্বাসযন্ত্র প্রভাবিত হয়ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডাব্লুএইচও) অনুসারে কুষ্ঠ সম্ভবত শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে এবং পোকামাকড়ের মাধ্যমে ছড়ায় আবার অন্যদিকে বেশীরভাগ মানুষ মনে করেন সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধমেও ছড়ায় এই অবস্থার উপসর্গগুলি স্পষ্ট দেখা যায় যা এই রোগকে সহজে সনাক্ত করতে সাহায্য করেফ্যাকাশে দাগ বা ছোপযুক্ত চামড়া মূলত মসৃণ অসার ও বিবর্ণ ক্ষত যা পার্শ্ববর্তী এলাকার তুলনায় হালকা বর্ণের চামড়ার উপর ক্ষুদ্র উঁচু ফোঁড়া জাতীয় বস্তু শুষ্ক ও শক্ত চামড়া পায়ের পাতার নিচের অংশে ঘা মুখের বা কানের কিছু অংশ উঁচু হয়ে ফুলে যাওয়া চোখের পাতা ও ভ্রূ র সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতি বা নষ্ট হয়ে যাওয়াঅন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছেসংক্রামিত জায়গায় অসারভাব ও ঘাম হওয়া পঙ্গু হয়ে যাওয়া পেশীতে দুর্বলতা নার্ভের বা স্নায়ুর বৃদ্ধি বিশেষত কনুই ও হাঁটুর চারপাশে মুখের নার্ভে বা স্নায়ুতে প্রভাব পরার দরুন অন্ধত্বপরবর্তী পর্যায়ে এটির ফল যা হতে পারেপা ও হাত অসমর্থ হয়ে যাওয়া আঙ্গুল ও পা ছোট হয়ে যাওয়া এবং শুকিয়ে যাওয়া পায়ের আলসার বা ঘা ভাল না হওয়া নাক বিকৃত হয়ে যাওয়া চামড়ায় জ্বালাভাব অনূভব করা ব্যথাযুক্ত বা সংবেদনশীল স্নায়ু কুষ্ঠরোগটি ম্যাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপরে নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয় যা সাধারণত আমাদের পরিবেশে থাকে জিনগত পরিবর্তন এবং বৈচিত্র্য কুষ্ঠরোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে একইভাবে প্রতিরক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন এবং প্রদাহের ফলে এটি হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় রোগটি দীর্ঘস্থায়ী সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে দীর্ঘস্থায়ী যোগাযোগের কারণে বা বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় নাসারন্দ্রের মাধ্যমে প্রবেশ করা ব্যাকটেরিয়ার কারনেও ছড়াতে পারে কুষ্ঠরোগ নির্ণয় করা হয় ত্বকের রঙের দ্বারা যা ত্বকের আসল রঙের চেয়ে গাঢ় বা হালকা হয় এই ছোপগুলি লালচে হতে পারেপরীক্ষার ফলাফল নিশ্চিত করতে ডাক্তার একটি ত্বক বা নার্ভ বায়োপসি পরিচালনা করতে পারেএই অবস্থায় এন্টিবায়োটিকের দ্বারা চিকিৎসা করা যাতে পারে এই বহুড্রাগ থেরাপি অ্যান্টিবায়োটিক সহ্য করার ক্ষমতা এড়াতে গুরুত্বপূর্ণ এর মধ্যে অন্তর্ভুক্ত ড্যাপসন ক্লোফাজিমিন ও রিফাম্পিসিনযদি এই ওষুধ থেকে অ্যালার্জি হয় তাহলে মিনোসাইক্লিন ক্ল্যারিথ্রোমাইসিন ও অফ্লক্সাসিন কার্যকারী বিকল্পসারহীনতা এড়াতে বিশেষ জুতাগুলি বেছে নিন যা পাটিকে সুরক্ষিত করে স্বাভাবিক গতিপথে আনবে অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে দৃশ্যমান বিকৃতির চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং আত্মবিশ্বাস উন্নত করতে সাহায্য করেসম্পূর্ণভাবে এই রোগের চিকিৎসা করতে প্রায় এক বছরের উপর লাগবে আপনার ডাক্তারের কাছ থেকে দ্রুত পরামর্শ নেওয়া গুরুত্বপূর্ণ জোর করে সময় মতো চিকিৎসা করলে এটি সম্পূর্ণ নির্মূল হতে পারে জক ইচ হল কুঁচকির এলাকার চারপাশের ত্বকের একটি ফাঙ্গাল সংক্রমণ এটিকে দাদ বা চিকিৎসাগতভাবে টিনিয়া ক্রুরিসও বলা হয় এটি একটি খুবই সাধারণ ত্বকের সংক্রমণ এবং কুঁচকির এলাকায় ভাসাভাসাভাবে প্রভাব ফেলে এটি জীবনের জন্য ঝুঁকিদায়ক অবস্থা নয় কিন্তু গুরুত্বপূর্ণ অস্বস্তি এবং সামাজের কাছে বিব্রতকর অবস্থা সৃষ্টি করতে পারে জক ইচ কুঁচকির এলাকার চারপাশে প্রভাব ফেলে যাইহোক এটি ভিতরের উরু নিতম্ব এবং কিছু ক্ষেত্রে পেটে ছড়িয়ে পড়তে পারে উপস্থে সাধারণত প্রভাব ফেলে না এটি বেশিরভাগ খেলোয়াড় বা স্থূলকায় ব্যক্তিদের মধ্যে বারংবার হতে দেখা যায় নিম্নলিখিত লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি জক ইচের ইঙ্গিত দিতে পারেপ্রভাবিত ত্বকের রঙের পরিবর্তন হয়ে যায় সাধারণত প্রভাবিত জায়গায় লালচে ভাব দেখা দেয় বিজগুরির মতো দেখায় যা আকারে গোল হয় (আরও পড়ুন ত্বকের বিজগুরির চিকিৎসা) ক্ষতর জায়গাটা খুবই প্রবলভাবে চিহ্নিত হয়ে যায় ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার সমকেন্দ্রিক বৃত্তের ভিতর স্বাভাবিক দেখতে চামড়া থাকতেও পারে ক্ষতটি একটু উঁচু দেখাবে ক্ষতটি সহ ফোস্কা হতে পারে চুলকুনি এবং অস্বস্তি সাধারণতভাবে দেখা যায় ব্যায়াম করলে উপসর্গগুলি আরও খারাপ হয়এটি একটি পুনরাবৃত্তিমূলক সংক্রমণ এবং অতীতে যদি কেউ জক ইচে ভুগে থাকেন তারা ভবিষ্যতেও সম্ভবত আক্রান্ত হতে পারেন আবার কিছু সময় কুঁচকির এলাকার সংক্রমণটি পায়ের সংক্রমণের সাথে সংমিশ্রণে দেখা যায় এটি হল একটি ফাঙ্গাল সংক্রমণ যা ছোঁয়াচে ত্বকের উপরিতলের উপর ছত্রাকের বৃদ্ধিটি যা আর্দ্র এবং উষ্ণ হয় তাই খুবই টাইট বা ভেজা অন্তর্বাস পড়লে তা ঝুঁকির বিষয় হতে পারে অতিরিক্ত ওজনের ব্যক্তিদের যাদের ত্বকের ভাজ ছুঁতে থাকে তাদেরও একটি বিশাল ঝুঁকি থাকে সংক্রামিত টাওয়েল চাদর ইত্যাদি ব্যবহার করার মাধ্যমে জক ইচ ছড়াতে পারে যেহেতু এটি ভিষন ছোঁয়াচে তাই সংস্পর্শের মাধ্যমে আপনার শরীরের অন্য অংশেও ছড়িয়ে যেতে পারে এই অবস্থাটি মহিলাদের থেকে পুরুষদের বেশি প্রভাবিত করে যে ফাঙ্গিগুলি জক ইচের কারণ সেইগুলি হল এপিডারমোফাইটন ফ্লকোসাম এবং ট্রাইকোফাইটন রুব্রাম রোগীর মেডিকেল ইতিহাস এবং প্রভাবিত জায়গাটা পরীক্ষা করে রোগ নির্ণয় করা হয় তবুও একটি পটাসিয়াম হাইড্রক্সাইড (কেওএইচ) স্লাইড তৈরি হতে পারে যা 46 সপ্তাহের মধ্যে ছত্রাকের ধরন নিশ্চিত করতে পারে যেহেতু টিনিয়া ক্রুরিস হল একটি মৃদু সংক্রমণ তাই এটিতে সাধারণত দিনে 23 বার টপিকাল আন্টিফাঙ্গালস দিয়ে চিকিৎসা করা হয় 3 থেকে 4 সপ্তাহের মধ্যে সাধারণত এই সংক্রমটি সম্পূর্ণভাবে সেরে যায় এলাকাটিকে শুষ্ক রাখতে যত্ন নেওয়া উচিত এবং ভালো পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতার নিয়ম বজায় রাখা উচিত খিটখিটে মেজাজ মানে অহেতুক প্রতিক্রিয়া বোঝায় এটাকে মেজাজের উপর কম নিয়ন্ত্রণ হিসাবে চিহ্নিত করা হয় যেটার ফল হয় আকষ্মিক মৌখিক বা আচরণগত বিস্ফোরণ যদিও এই মেজাজের প্রকাশ বাইরে থেকে বোঝা যায় না এটা দীর্ঘস্থায়ী সাধারণ বা কম সময়ের জন্য হতে পারে খিটখিটে মেজাজ একটা স্বাভাবিক বিরক্তির প্রকাশ হতে পারে বা কোনো অন্তর্নিহিত রোগের ফলে হতে পারে খিটখিটে মেজাজের সাধারণ উপসর্গগুলি হলোবদমেজাজ বা অল্পতেই রেগে যাওয়া অত্যধিক হতাশাদীর্ঘকালীন ও অত্যধিক খিটখিটে মেজাজের উপসর্গগুলি হলোপ্রচন্ড প্রতিক্রিয়া যেটা প্রকাশ পায় সম্পর্কহীন ব্যক্তির উপর হতাশা মানসিক চাপ এবং দুশ্চিন্তা অহেতুক প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করে দীর্ঘকালীন খিটখিটে মেজাজের কারণে মানসিক চাপ দেখা দেয় কর্মক্ষেত্রে রোগীর আত্মীয় এবং সহযোগীদের কষ্ট খিটখিটে মেজাজ সবসময়ই কোনো অন্তর্নিহিত কারণের জন্য হয় না এটা নিয়মিত বিরক্তি বারবার উসকানো বা দীর্ঘ মানসিক চাপের কারণেও হয়খিটখিটে মেজাজের সাধারণ কারণগুলি হোলোবিভিন্ন অসুখ যেমন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান সিনড্রোম মেনোপস হাইপারথাইরয়েডিসম দাঁতে ব্যথা ফ্লু এবং কানে সংক্রমণ মানসিক অসুখ যেমন চাপ দুশ্চিন্তা হতাশা বাইপোলার অসুখ সীত্সফ্রেনীয়্যা মনোযোগের ঘাটতি ও অতি মাত্রায় সক্রিয় এবং অটিজম এটা সাধারণত কিশোর এবং তরুনাবস্থায় দেখা যায় শিশুদের মধ্যেও খিটখিটে মেজাজের উপসর্গ এবং সাথে বেপরোয়া আচরণ দেখা দিতে পারে মহিলাদের মধ্যে খিটখিটে মেজাজ পরিষ্কার দেখা যায় মাসিকের আগে পেরিনাটাল এবং পেরিমেনোপসাল কালে কাজ পাগল জীবনও খিটখিটে মেজাজের সাথে জুড়ে থাকে দীর্ঘ মানসিক চাপ মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ করার অক্ষমতা মদ্যপানের অভ্যেস রোগীর ইতিহাস ভাল করে শুনে এবং তার মূল্যায়ন করে তারপর এই রোগের সনাক্তকরণ করা হয় পরিবারের সদস্যদেরও বলা হয় উপসর্গগুলির ইতিহাস জানাতে যেটা সনাক্তকরণের জন্য অত্যন্ত প্রয়োজনীয়ওআপনার চিকিৎসক আপনাকে এই রোগের মূল কারণ অনুসন্ধান করার পরামর্শ দিতে পারেনখিটখিটে মেজাজের চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে মূল সাস্থ্যের অবস্থার এবং আরও অন্যান্য কারণ যা এই রোগ সৃষ্টি করছে তার পরিমাপ করা এবং তা নিয়ন্ত্রণ করাখিটখিটে মেজাজের চিকিৎসার জন্য কগ্নিটিভ আচরণগত থেরাপী এবং মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যেমন ধ্যান করা এবং মনোযোগী হতে পরামর্শ দেওয়া হয়আপনার চিকিৎসক আপনাকে কিছু ওষুধ দিতে পারেন যেমন অবসাদ কমানোর ওষুধ এবং মেজাজ ঠিক রাখার ওষুধখিটখিটে মেজাজ দূর করতে আরাম করা খুবই প্রয়োজনীয় যেমনকোনো শারীরীক কসরত করা যেমন হাঁটা বা সাঁতার কাটা বই পড়া গান শোনা শ্বাসের ব্যায়াম করা বন্ধ্যাত্ব হল এমন একটা অবস্থা যেখানে একজন দম্পতি বাচ্চা ধারণ করতে অসফল হন বা একজন মহিলা জন্মনিয়ন্ত্রণ ব্যবস্থা ব্যবহার না করে এক বছর ধরে চেষ্টা করার পরও গর্ভবতী হতে সক্ষম না হন কিছু কিছু ক্ষেত্রে একটি মহিলা গর্ভবতী হলেও অনেক জটিলতার সন্মুখিন হন যেমন ঘন ঘন গর্ভপাত বা মৃত সন্তান প্রসব করা যা বন্ধ্যাত্বের আয়ত্তেই পরে কিছু লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো যা আপনার উর্বরতার অবস্থা নির্ণয় করতে সাহায্য করে তার মধ্যে রয়েছেঅনিয়মিত মাসিক চক্র তীব্র শ্রোণীর ব্যথা এক বছরের ধরে চেষ্টা করার পরও গর্ভধারণ না করতে পারা আপনার বয়স 35 অথবা 40 বছরের বেশি হওয়া অথবা কোনও গর্ভনিরোধক পদ্ধতি ব্যবহার না করে নিয়মিত যৌন সঙ্গম করা ঘন ঘন গর্ভপাত করানো বা গর্ভপাত হয়ে যাওয়ার ইতিহাস থাকা বন্ধ্যাত্বের কিছু কারণের মধ্যে রয়েছেমহিলাদের অনিয়মিত ডিম্বস্ফোটন বা না হওয়া পুরুষদের মধ্যে শুক্রাণুর গঠন এবং কার্যকরীতা প্রভাবিত হলে তা টেস্টিসে সমস্যা করে মহিলাদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের অন্যান্য সাধারণ বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে বেশি বয়স হরমোন এবং প্রজনন অঙ্গের সাথে জড়িত সমস্যাগুলি ফ্যালোপিয়ান টিউবে খুঁত বা বাধা (সাধারণত সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড সংক্রমণ বা এন্ডোমেট্রিয়োসিসের কারণে হয়) থাইরয়েড অথবা পিটুইটারি গ্রন্থির অস্বাভাবিক ক্রিয়াকলাপ পুরুষদের মধ্যে বন্ধ্যাত্বের অন্যান্য সাধারণ বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে টেস্টিসে শুক্রাণুবাহক টিউবে বাধা সমস্ত লক্ষণ এবং উপসর্গগুলো বিবেচনা করার পর ডাক্তার বন্ধ্যাত্ব নির্ণয় করতে পারেন দম্পতির একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ মেডিকেল ইতিহাস নেবেন শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং সন্দেহজনক রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করার জন্য নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলির উপদেশ দেবেনরক্ত পরীক্ষাগুলো প্রোজেস্টেরন পরীক্ষা (মহিলাদের মাসিক চক্রের 23 দিনের আশেপাশে) ফলিকলস্টিমুলেটিং হরমোন (এফএসএইচ/FSH) অ্যান্টিমুলেরিয়ান হরমোন (এএমএইচ/AMH) থাইরয়েডের ক্রিয়ার পরীক্ষা প্রল্যাক্টিন মাত্রার পরীক্ষা ওভারিয়ান রিসার্ভ নির্ণায়ক পরীক্ষাপ্রস্রাব পরীক্ষাইমেজিং পরীক্ষা এবং পদ্ধতি আলট্রাসাউন্ড হিস্টেরোসালপিঙ্গোগ্রাফি সোনোহিস্টেরোগ্রাফি হিস্টেরোস্কোপি ল্যাপারোস্কোপিসিমেন (বীর্য) পরীক্ষাবন্ধ্যাত্বের জন্য ভিন্ন ভিন্ন চিকিৎসার কার্যবিধির মধ্যে রয়েছেযৌনসহবাসের শিক্ষা ওষুধগুলি যা ডিম্বের উন্নতি এবং ডিম্বস্ফোটন সংঘটিত করে যার মধ্যে রয়েছে গোনাডোট্রোপিন ইনজেকশন এবং ক্লোমিফিন সাইট্রেট পিলস সচল শুক্রাণুর একটি উচ্চ একাগ্রতা অর্জনের জন্য ইনসেমিনেশন এবং ওয়াশিংএর দ্বারা সার্ভিক্সের বাইপাস করতে এটি তৈরি করা হয় এবং এটি সারাসরি জরায়ুসংক্রান্ত গহ্বরে স্থাপন করা হয় ইন ভিট্রো ফার্টিলাইজেশন (আইভিএফ/IVF) যেখানে ডিম শুক্রাণুর দ্বারা শরীরের বাইরে ফার্টিলাইজড বা উর্বর করা হয় সারোগেসি যেখানে একটি তৃতীয় ব্যক্তি শুক্রাণু বা ডিম্ব দান করে বা একটি মহিলা ভ্রণটিকে বহন করতে সক্ষম সার্জারির মধ্যে রয়েছে অ্যাবডমিনাল মায়োমেক্টমি ব্যবহার করে ইউটেরিন ফাইব্রয়েডস সরিয়ে ফেলা হাইপারসোমনিয়া হল দীর্ঘস্থায়ী স্নায়ুতন্ত্রের ব্যাধি যেখানে একজন হয়তো দীর্ঘক্ষণ ধরে রাতের ঘুম অথবা দিনের বেলা অত্যাধিক ঘুমভাব উপলব্ধি করতে পারেন যাঁরা অপর্যাপ্ত অথবা অশান্ত ঘুমের কারণে ক্লান্ত বোধ করেন তাঁদের তুলনায় যাঁরা হাইপারসোমনিয়ায় ভোগেন তাঁরা সারারাত ঠিক কমে ঘুমনো সত্ত্বেও দিনের বেলা লম্বা ঘুম দিতে বাধ্য বোধ করেন হাইপারসোমনিয়া প্রায়শই অন্য রোগের সাথে জড়িত আর তা রোগীর দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে সবেচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলসর্বক্ষণ দিনের বেলা অত্যাধিক ঘুমানো বা ঘুম্ ভাবের অভিযোগ কাজকর্ম খাওয়া অথবা এমনকি কথপোকথনের মধ্যের মতো অসময়ে একজন বারবার হালকা ঘুমিয়ে নেওয়ার প্রয়োজনীয়তা অনুভব করেন দিনের বেলা অল্প সময়ের জন্য ঘুমিয়ে নিলেও অত্যাধিক ঘুমভাব কমে না আর লম্বা ঘুমের পর কারওর প্রায়শই বিভ্রান্তিবোধ এবং অস্বস্তি লাগতে পারেঅন্যান্য উপসর্গউদ্বিগ্নতা বিরক্তি বেড়ে যাওয়া অস্থিরতা উদ্যম কমে যাওয়া মন্থর চিন্তাভাবনার পক্রিয়া এবং কথাবার্তা যা সারাদিন ধরে থাকে ক্ষুধামন্দা কোনও পারিবারিক অথবা সামাজিক সমাবেশ এবং পেশাদারী পরিবেশে কাজ করতে অসুবিধা অন্যান্য স্নায়বিক ব্যাধির মতোই হাইপারসোমনিয়ার কারণও ভালো করে জানা নেই তবে শরীরে একটি নির্দিষ্ট অণুর বেশিমাত্রায় উৎপাদন হওয়ার প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে যা মস্তিষ্কের একটি হরমোনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং তন্দ্রাভাব বাড়িয়ে দেয়সাধারণ কারণগুলি হলঘুমের ব্যাধি যেমন ন্যারকোলেপ্সি এবং স্লিপ অ্যাপনিয়া অটোনমিক স্নায়ু তন্ত্রের অকার্যকারিতা মাদক অথবা মদ্যপানের অপব্যবহারঅন্য কারণগুলি হলটিউমার কেন্দ্রীয় স্নায়ু তন্ত্রে অথবা মস্তিষ্কে আঘাত নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ খাওয়া বা কিছু ওষুধ বন্ধ হওয়া হাইপারসোমনিয়ায় পরিণত হতে পারে যেমন অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট উদ্বেগ কমানোর এজেন্ট অ্যান্টিহিস্ট্যামিনিক ও প্রভৃতি ব্যাধি যেমন একাধিক স্কেলেরোসিস ডিপ্রেশন এনসেফালাইটিস মৃগী অথবা ওবেসিটির মতো অসুখও হাইপারসোমনিয়ার কারণ হতে পারে জেনেটিক কারণেও হাইপারসোমনিয়ার হতে পারে এরও প্রমাণ পাওয়া গিয়েছে হাইপারসোমনিয়া সাধারণত কৈশোরাবস্থার আগেই ধরা পড়ে যায় উপসর্গ এবং ঘুমানোর অভ্যাসের মূল্যায়ন করার জন্য পরিবারের সদস্যের উপস্থিতিতে বিশদে চিকিৎসাজনিত ইতিহাস জেনে নিলে রোগ নির্ণয়ে সাহায্য পাওয়া যায়যে সমস্য় ওষুধের কারণে হাইপারসোমনিয়া হচ্ছে তা দূর করতে ওষুধ বন্ধ করতে হতে পারে চিকিৎসাজনিত অবস্থার অন্তর্নিহিত কারণ নির্ণয়ের উদ্দেশে আপনাকে হয়তো পরীক্ষা করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারেহাইপারসোমনিয়ার অনুসন্ধানে অন্তর্ভুক্তসারারাতে ঘুমানোর পরীক্ষা অথবা পলিসোমনোগ্রাফি (পিএসজি) টেস্ট মাল্টিপল স্লিপ লেটেন্সি টেস্ট (এমএসএলটি) জেগে থাকা বা সচেতনতা পরীক্ষার রক্ষণাবেক্ষণহাইপারসোমনিয়ার চিকিৎসাপ্রণালী নির্ভর করে উপসর্গ থেকে উপশম প্রদান এবং অন্তর্নিহিত কারণের চিকিৎসার উপরঅ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট এবং সচেতনতাবর্ধক এজেন্টের মতো ওষুধ কগ্নিটিভ বিহেভরিয়াল থেরাপি (সিবিটি) সহায়ক হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে হাইপারসোমনিয়া রয়েছে এমন কিছু রোগীর জন্যনিজ যত্ন নেওয়াঘুমনোর ধরণে প্রভাব ফেলে এমন কারণ এড়িয়ে চলা যেমন রাত অবধি জেগে কাজ করা বা রাতে সামাজিক কাজকর্মে অংশ নেওয়া মদ এবং ক্যাফিন জাতীয় জিনিস এড়িয়ে চলা 120 ধরনের হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস (এইচপিভিস/HPVs) আছে যার মধ্যে প্রায় 40 টি যৌনবাহিত হয়এইচপিভি সংক্রমণ হল সবচেয়ে সাধারণ যৌনবাহিত সংক্রমণগুলির মধ্যে একটি এবং পুরুষ ও মহিলা উভয়কেই সংক্রামিত করে এইচপিভি সংক্রমণের উপসর্গগুলি শরীরের মধ্যে প্রবেশ করা ভাইরাসের ধরনের উপর নির্ভর করে পরিবর্তিত হয় বেশীরভাগ এইচপিভি ভাইরাসের প্রসারণ আঁচিল বা উপমাংসের সৃষ্টি করে এগুলো অনিয়মিতভাবে মুখে হাতে গলায় এবং যৌনাঙ্গে দেখা যায় এইচপিভি উচ্চ শ্বাসযন্ত্রের ক্ষত সৃষ্টি করতে পারে যা প্রধানত টনসিল ল্যারিনক্স এবং গলাতে হয় কিছু ভাইরাস মহিলাদের সারভাইকাল ক্যান্সার এবং অরোফ্যারিন্জীল ক্যান্সারের জন্য দায়ী হয় কোনো কোনো ক্ষেত্রে মুখে ও গলায় ক্যান্সার হতে শোনা যায় যখন ভাইরাসের কারণে সারভাইকাল ক্যান্সার হয় তখন বাড়াবাড়ির পর্যায় না হওয়া পর্যন্ত উপসর্গগুলি দেখা যায় না এইচপিভি সাধারণত সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে যৌন সংস্পর্শের মাধ্যমে দেহে প্রবেশ করে কারণ লিঙ্গটি সংক্রমণের সবচেয়ে সাধারণ মোড বা ধরন (আরো পড়ুন কিভাবে নিরাপদ যৌনসহবাস হয়) একাধিক যৌন সঙ্গী থাকা এবং মৌখিক যৌনতা সংক্রমণটির চুক্তির ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এইডস রোগী এবং অন্যান্য ইমিউন সিস্টেম ডিজিজ বা অনাক্রম্য অসুখ হল এইচপিভি সংক্রমণ করতে বেশি সক্ষম এটা শরীরে কোনো খোলা ঘা কাটা বা খোলা ক্ষতর মাধ্যমেও প্রবেশ করতে পারে অযৌন সংক্রমণ অন্য ব্যক্তির শরীরের উপরে থাকা একটি আঁচিল স্পর্শের দ্বারা হয় একটি শারীরিক পরীক্ষায় ডাক্তার একটি রোগ নির্ণয়ে পৌঁছাতে আঁচিল পরীক্ষা করেন মেডিকাল ও যৌন ইতিহাসও খুব গুরুত্বপূর্ণ যদি এইচপিভির সন্দেহ করা হয় তবে অস্বাভাবিকতা সনাক্ত করার জন্য সার্ভিকাল কোষগুলির উপর তুলোর বল ব্যবহার করে একটি প্যাপ স্মীয়ার পরীক্ষা পরিচালিত হয় সার্ভিকাল ক্যান্সারের কারণ হল এইচপিভি ভাইরাস যা প্রায়শই পরীক্ষাগারে পরীক্ষা করে সার্ভিকাল কোষে ভাইরাল ডিএনএর উপস্থিতির দ্বারা নিশ্চিত হয়ভাইরাসটিকে নির্মূল করার কোনে চিকিৎসা নেই এটা সুপ্ত থাকতে পারে বা কোনো হস্তক্ষেপ ছাড়াই উধাও হয়ে যেতে পারেএইচপিভির দ্বারা সৃষ্ট মৃদু আঁচিলের জন্য ডাক্তার খাবার ওষুধের পাশাপাশি টপিকাল ক্রিমগুলিও নির্ধারণ করতে পারেন যদি আঁচিল ওষুধে ঠিক না হয় তাহলে লেজার বা ক্রায়োথেরাপির দ্বারা অস্ত্রপচারগত অপসারণ করা হয় যদি এইচপিভির কারণে ক্যান্সার হয় তাহলে কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপি সহ ব্যাপক চিকিৎসার প্রয়োজন হয় যদিও এইচপিভি দ্বারা সৃষ্ট সার্ভিকাল ক্যান্সারের বিরুদ্ধে প্রতিষেধক টিকা পাওয়া যায় তাহলেও মহিলাদের যৌন সঙ্গমের সময় কনডম ব্যবহার করার মতো সংক্রমণের যোগাযোগ প্রতিরোধের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত মানুষের শরীরে হরমোনের স্বাভাবিক মাত্রার গড়বড়কে হরমোনের অসামঞ্জস্যতা (হরমোনের ভারসাম্যহীনতা) বলে হরমোন হলো একটা রাসায়নিক পদার্থ যেটা আমাদের শরীরের এন্ডোক্রিন গ্রন্থি থেকে নিঃসৃত হয় এটি রক্তের প্রবাহের মধ্যে দিয়ে বয়ে যায় এবং বিভিন্ন অঙ্গ প্রতঙ্গে বার্তা পৌঁছে দেয় এই ভাবে এটি এদের ক্রিয়ার সমন্বয় করে এবং ক্রিয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে হরমোনের ওঠানামা অনেকসময় প্রাকৃতিক ভাবে হয় যেমন গর্ভাবস্থার কিছু সময় বা বয়সের সাথে হরমোনের অসামঞ্জস্যতা অনেকসময় লিঙ্গ এবং প্রকৃতির উপর নির্ভর করে হরমোনের পরিবর্তনের সময়মত চিকিৎসা না করানোয় শারীরিক ও মানসিক অস্বাভাবিকতা দেখা দিতে পারে হরমোনের অসামঞ্জস্যতা (হরমোনের ভারসাম্যহীনতা) প্রধান লক্ষন ও উপসর্গগুলো নিম্নলিখিত কারণের উপর নির্ভর করেক্লান্তি ঘেমে যাওয়া দুশ্চিন্তা বোধ করা খিটখিটে মেজাজ বন্ধ্যাত্ব স্তনের বোঁটা থেকে নিঃসরণ ওজন বাড়া বয়স্কদের ব্রণ ওজন কমে যাওয়া অনিয়মিত মাসিক স্মৃতি শক্তি কমে যাওয়া দূর্বল পেশী ও হাড় চুল পড়ে যাওয়া ইন্সমনিয়া (ঘুমের ব্যঘাত) গরম ঝলক হতাশা হাত ও পায়ের পাতা ঠান্ডা থাকা মেজাজের পরিবর্তন নিয়মিত পায়খানা না হওয়াহরমোনের অসামঞ্জস্যতা (হরমোনের ভারসাম্যহীনতা)র সাথে হৃদস্পন্দনে রক্তচাপ এবং রক্তে সুগারের মাত্রাতে পরিবর্তন দেখা যায় হরমোনের অসামঞ্জস্যতার প্রধান কারণগুলো হলোমানসিক চাপ দীর্ঘ ক্লান্তির উপসর্গ জিনগত পরিবর্তন কিছু ওষুধ যেমন স্টেরয়েডস মেনোপজ গর্ভাবস্থা জন্ম নিরোধক ওষুধ অটোইমিউন অবস্থা উল্টোপাল্টা খাবার থাইরয়েড গ্রন্থির সমস্যা হাইপার বা হাইপো থাইরোডিজম বয়স বৃদ্ধি কিছু অ্যালার্জি মেডিক্যাল অবস্থা যেমন পলিসিস্টিক ওভারিয়ান অসুখ প্রোল্যাক্টিনোমা গ্রন্থিগুলোর কম বা বেশী ক্রিয়াকলাপ (পিটুইটারী থাইরয়েড ওভারিজ টেস্টেস অ্যাড্রেনালস হাইপোথ্যালামাস এবং প্যারাথাইরয়েড) বিশদ ইতিহাস ও শারীরিক পরীক্ষা ছাড়াও হরমোনের মাত্রায় ভারসাম্যহীনতা সাধারণত স্যালাইভা এবং সিরাম পরীক্ষার দ্বারাই নির্ণয় করা হয় যৌন হরমোনের যেমন টেস্টোস্টেরন এবং এস্ট্রোজেনের মাত্রা নির্ণয় করার জন্য পরীক্ষা করতে বলা হয় ইমেজিং স্টাডিস যেমন আল্ট্রাসাউন্ড বা এম আর আই করার প্রয়োজন হতে পারেহরমোনের অসামঞ্জস্যতা (হরমোনের ভারসাম্যহীনতা) নিয়ন্ত্রণ করা হয় আসল কারণের চিকিত্‍সা করে এবং নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে চিকিত্‍সা করা হয়ওষুধ মলম ও প্যাচের মাধ্যমে সিন্থেটিক হরমোন দেওয়া হয় হরমোন প্রতিস্থাপন চিকিৎসা হরমোনের অসামঞ্জস্যতা (হরমোনের ভারসাম্যহীনতা)র উপসর্গ কম করতে সক্রিয় জীবনযাপন ও স্বাস্থ্যকর খাবারের পরামর্শ দেওয়া হয় যেসব ব্যক্তিদের দুশ্চিন্তা ও হতাশা আছে তাদের দুশ্চিন্তা ও হতাশা কমানোর ওষুধ দেওয়া হয় অতিরিক্ত হরমোনের নিঃসরনের ক্ষেত্রে হরমোন অ্যান্টাগোনিস্টস দেওয়া হয় যদিও খুবই কম হয় হারপিস সিমপ্লেক্স এনসেফেলাইটিস হলো উচ্চমৃত্যু ও রোগব্যাধির হার সহ একটি স্নায়বিক অবস্থা এটি হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসের কারণে হয় এবং জ্বর অতিসক্রিয়তা ঝিমুনি এবং/অথবা সাধারণ দুর্বলতা হিসেবে প্রকাশ পায় প্রাথমিক উপসর্গগুলি হলো মাথাব্যাথা জ্বর তড়কা বা খিঁচুনি সাধারণ দুর্বল ভাবের সঙ্গে ঝিমুনি বিভ্রান্তি মানসিক ভ্রান্তি দেরিতে দেখা দেওয়া উপসর্গগুলি হলো কথাবার্তা বা লেখার মাধ্যমে আদানপ্রদানে অসুবিধা ঘ্রানশক্তি চলে যাওয়া স্মৃতিশক্তি লোপ অতিসক্রিয়তা মনোরোগের ঘটনা অতিরিক্ত গুরুতর উপসর্গগুলি হলো সজাগ প্রতিবর্তী ক্রিয়াতে পরিবর্তন চেতনা হারানো হ্যালুসিনেশন বা অমূলপ্রত্যক্ষ করা আংশিক পক্ষাঘাত রেটিনার প্রদাহ হারপিস সিমপ্লেক্স এনসেফেলাইটিসের খুব সাধারণ কারণ হলো হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ ওয়ানের সংক্রমণ অন্যান্য বিরল কারণগুলি হলো হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ IIএর সংক্রমণ (সদ্যোজাতদের মধ্যে খুব সাধারণ) হারপিস সিমপ্লেক্স এনসেফেলাইটিসের কিছু উপসর্গ দেখা দিতে পারে টিস্যুর ক্ষয়ের ফলে যা মস্তিষ্কে হেমারেজিক নেক্রোসিস (টিস্যুর মৃত্যু)এর সাথে সম্পর্কযুক্ত হারপিস সিমপ্লেক্স এনসেফেলাইটিস হয় যখন মানসিক চাপ অথবা আঘাতের ফলে স্নায়ুর ট্যিসুর মধ্যে থাকা একটি নিষ্ক্রিয় সুপ্ত হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস ফের সক্রিয় হয়ে ওঠে হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার প্রাথমিক ঘটনার বেশ কয়েক বছর পর সুপ্ত ভাইরাসটির প্রতিক্রিয়াশীল হয়ে ওঠার সম্ভাবনা থাকে হারপিস সিমপ্লেক্স এনসেফেলাইটিস নির্ণয় করা হয় ক্লিনিক্যাল পরীক্ষা এবং অনুসন্ধানের ভিত্তিতেঅনুসন্ধানের মধ্যে রয়েছেরক্ত পরীক্ষা সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষা ইলেকট্রোএনসেফালোগ্রাম ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) মস্তিষ্কের বায়োপসিহারপিস সিমপ্লেক্স এনসেফেলাইটিসের প্রাথমিক চিকিৎসায় অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের ব্যবহারে সুস্থ হওয়ার উপকারিতা দেখা গিয়েছেডাক্তার প্রয়োজন অনুযায়ী 14দিনের কোর্সের অ্যাসাইক্লোভির ট্যাবলেটে দিতে পারেনঅবস্থার গুরুত্বের উপর নির্ভর করে ডাক্তার শিরায় অ্যাসাইক্লোভির প্রদান করতে পারেনহারপিস সিমপ্লেক্স এনসেফেলাইটিসের সাথে যুক্ত তড়কা বা খিঁচুনির ক্ষেত্রে অ্যান্টিকনভালসেন্টসের প্রয়োজন হতে পারেধমনীর কার্বন ডাইঅক্সাইডের আংশিক চাপ হ্রাস বজায় রাখতে মাথার উত্তোলন ম্যানিটল বা গ্লিসারোল অ্যাডমিনিস্ট্রেশন এবং হাইপারভেনটিলেশনের পরামর্শ দেওয়া হতে পারে হ্যালুসিনেশন কোন অসুখ নয় এটি আসলে একটি উপসর্গ যেখানে মানুষের বিভিন্ন কাল্পনিক অভিজ্ঞতা হয় একজন ব্যক্তি কোন প্রকৃত বাহ্যিক উদ্দীপক ছাড়াই অন্য ব্যক্তির শব্দ গন্ধ স্পর্শ বা উপস্থিতি অনুভব বা অভিজ্ঞতা হতে পারে এটি ডিমেনশিয়া ও ডিলিরিয়াম সহ একাধিক মানসিক এবং চিকিত্‍সার অবস্থার সঙ্গে সম্পর্কিত বয়সবৃদ্ধির একটি অংশ হিসাবে হ্যালুসিনেশন প্রায়শই বয়স্কদের মধ্যে দেখতে পাওয়া যায়হ্যালুসিনেশনকে পাঁচটি শ্রেণীতে ভাগ করা যায়অডিটরি (শব্দ) ভিসুয়াল (দৃশ্য) অলফ্যাক্টরি (ঘ্রাণ) গাস্টেটরি (স্বাদ) ট্যাকটাইল (স্পর্শ) সোমাটিক (দেহগত)হ্যালুসিনেশন ও ইলিউশন এক জিনিস নয় ইলিউশন হল যেখানে কোন প্রকৃত ঘটমান পরিস্থিতি বুঝতে ভুল হয় অডিটরি (শব্দ) হ্যালুসিনেশনএই প্রকারের হ্যালুসিনেশনে রোগী কোন বাস্তব বাহ্যিক উৎস ছাড়াই এক বা একাধিক কণ্ঠস্বর শুনতে পায়কিছু ক্ষেত্রে আপনি তৃতীয় ব্যক্তি হিসাবে দুইটি গলাকে আপনার সম্বন্ধে কথা বলতে শুনতে পারেন এই দুই কণ্ঠস্বর হতে পারে আপনার মাথার বাইরে বা ভিতরে কোন কোন সময়ে আপনি নিজের চিন্তাই সশব্দে শুনতে পাবেনভিসুয়াল (দৃশ্য) হ্যালুসিনেশনআপনি অন্য মানুষের উপস্থিতি বা আলোর ঝলক দেখতে পাবেন যা বাস্তবে অনুপস্থিতঅলফ্যাক্টরি (ঘ্রাণ) হ্যালুসিনেশনআপনি অভ্যন্তরীণ বা বাহ্যিক উৎস থেকে আসা গন্ধ পেতে পারেন এর জন্য কিছু রোগী অত্যধিক স্নান করে অতিরিক্ত সুগন্ধী (পারফিউম) ব্যবহার করে অথবা যদি তারা নিজেদেরকে এই দুর্গন্ধের উৎস বলে মনে করে তবে অন্যদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখেগাস্টেটরি (স্বাদ) হ্যালুসিনেশনআপনার স্বাদের অনুভূতির পরিবর্তন হয়ে যেতে পারে তেষ্টা এবং লালাক্ষরণ বেড়ে যেতে পারেট্যাকটাইল (স্পর্শ) হ্যালুসিনেশনআপনার চামড়ার উপর দিয়ে বা তলা দিয়ে পোকা হেঁটে বেড়াচ্ছে এরকম অনুভূতি হতে পারেসোমাটিক (দেহগত) হ্যালুসিনেশনআপনার অস্বাভাবিক শারীরিক অনুভূতির অভিজ্ঞতা হতে পারে যেমন অন্যদের গা স্পর্শ করলেও তাদের উপস্থিতি বুঝতে না পারা হ্যালুসিনেশনের নির্দিষ্ট কারণ জানা যায় না সাধারণত যে যে পরিস্থিতিতে হ্যালুসিনেশন দেখা যেতে পারে সেগুলি হলশব্দের হ্যালুসিনেশনস্নায়ুতন্ত্রের অসুখ কানের অসুখ সাইকোটিক ডিজঅর্ডার (আরো পড়ুন সাইকসিস উপসর্গ) ওষুধ মদ ত্যাগ করা সিজার (খিঁচুনি) স্ট্রোক উদ্বেগগন্ধের হ্যালুসিনেশনচোখের সমস্যা নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়বিক অসুস্থতা মাইগ্রেন মানসিক অসুস্থতা সাইনুসাইটিস ঘুমের অভাবস্বাদের হ্যালুসিনেশনসাইনুসাইটিসস্পর্শের হ্যালুসিনেশনঅবসেসিভ কম্পালসিভ ডিসঅর্ডার কিছু ওষুধের অতিরিক্ত সেবন স্কিজোফ্রেনিয়াদেহগত হ্যালুসিনেশনস্নায়ুতন্ত্রের অসুখ চিকিৎসক প্রথমে হ্যালুসিনেশনের কারণ জানার চেষ্টা করবেন এবং আপনার অবস্থা অনুযায়ী ওষুধ দেবেন রক্তপরীক্ষা মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান ইলেক্ট্রোএনসেফালোগ্রাফি (ইইজি) এবং এমআরআই করা হতে পারে সমস্যাটি নির্ণয় করা গেলে তার কারণটির চিকিৎসা করা হয়হ্যালুসিনেশনের চিকিৎসায় সাধারণত এন্টিসাইকোটিক ওষুধ দেওয়া হয় যদি কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসাবে হ্যালুসিনেশন ঘটে থাকে তবে চিকিৎসক সেই ওষুধের মাত্রা কমিয়ে দেবেন গনোরিয়া একটি যৌন সংক্রামক রোগ যা নেইসেরিয়া গনোরিয়া ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা সৃষ্ট এটি সাধারণত সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে অসুরক্ষিত যৌন মিলনের দ্বারা ছড়িয়ে পড়ে গনোরিয়া রোগীদের সাধারণত কোন লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকে না এবং যদি থাকেও তবে তা খুবই লঘু প্রকারের মুত্র ত্যাগের সময় যন্ত্রনা ও জ্বালা অনুভূতি গনোরিয়ার একটি সাধারণ লক্ষণপুরুষদের মধ্যে যে উপসর্গগুলি দেখা যায় সেগুলি হললিঙ্গ থেকে সাদা হলুদ বা সবুজ রঙের তরলের নির্গমণ অন্ডকোষে ফোলাভাব বা ব্যাথা হওয়া (খুবই কম ক্ষেত্রে দেখা যায়)মহিলাদের মধ্যে যে উপসর্গগুলি দেখা যায় সেগুলি হলমাসিকচক্রের মধ্যবর্তি সময়ে যোনি থেকে অস্বাভাবিক রক্তপাত যোনি থেকে তরল নির্গমন বৃদ্ধি পাওয়াপুরুষ ও মহিলা উভয়ের মধ্যেই যেসব সংক্রমণের উপসর্গগুলি দেখা যায়বেদনা রক্তপাত বা তরল নির্গমন মলদ্বারে চুলকানি বেদনাদায়ক মলত্যাগ এই ব্যাকটেরিয়াটি সংক্রামিত মানুষের বীর্যে (কাম) প্রিকাম এবং সংক্রামিত ব্যক্তির যোনি তরলের মধ্যে পাওয়া যায় এবং তাই এটি প্রধানত অসুরক্ষিত ভ্যাজাইনাল এনাল অথবা ওরাল যৌনমিলনের দ্বারা সংক্রামিত হয় ওই জীবাণুযুক্ত তরল লেগে থাকা হাত দিয়ে চোখ স্পর্শ করলে চোখেও এই সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়তে পারে সন্তানের জন্মের সময় সংক্রামিত মায়ের থেকে নবজাতকের মধ্যেও এটি ছড়িয়ে পড়তে পারে প্রাথমিকভাবে চিকিৎসক বিস্তারিত ভাবে সব ইতিহাস জানবেন এবং একটি সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করবেন এর উপর ভিত্তি করে চিকিৎসক নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলির পরামর্শ দেবেনসংক্রামিত জায়গাটি থেকে সোয়াব সংগ্রহ করে তা পরীক্ষা করে দেখা গনোরিয়া টেস্টকালচারঅণুবীক্ষণ যন্ত্রের মাধ্যমে নমুনার পরীক্ষা এবং নিউক্লেইক অ্যাসিড এমপ্লিফিকেশন টেস্ট (এনএএটি ) টেস্টের জন্য মুত্রের নমুনা সংগ্রহ করাচিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছে ডুয়াল থেরাপি অ্যান্টিবায়োটিক যার একটি ডোজ মুখে এবং একটি ইনজেকশনের মাধ্যমে শরীরের মাংসপেশির ভিতরে দেওয়া হয় কোনো ব্যক্তি যদি সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে যৌন সংস্পর্শে আসেন (রোগ নির্ণয়ের ৬০ দিনের মধ্যে) তবে তাকেও বাধ্যতামূলক পরীক্ষা ও চিকিৎসার পরামর্শ দেওয়া হয় গনোরিয়া আক্রান্ত ব্যক্তির ফলোআপ টেস্ট বা পরবর্তীকালীন পরীক্ষাগুলিও করা দরকার যাদের গনোরিয়ার চিকিৎসা চলছে তাদের ক্লমেডিয়ার চিকিৎসাও করানো উচিত চিকিৎসা শেষ না হওয়া পর্যন্ত যৌন সংসর্গ এড়িয়ে চলা উচিত (একটি একক ডোজ নেওয়ার পরে 7 দিন অপেক্ষা করুন যৌন মিলনের আগে) এটি হল যৌনবাহিত রোগ (এসটিডি/STD) জেনিটাল হারপিস হল খুব সাধারণ রোগ যা হারপিস ভাইরাসের কারণে হয় এটা প্রধানত উপস্থ মলদ্বার অথবা মুখের জায়গাকে আক্রমণ করে অন্য এসটিডির মতো এই রোগের অবস্থা জীবনের জন্য হানিকারক নয় কিন্তু ঐ স্থানের কোন স্থায়ী চিকিৎসা নেইগবেষণা দেখায় যে হারপিস হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (এইচআইভি/HIV) সংক্রমণ হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় রোগীরা কোন উপসর্গ অনুভব করবেন না এবং শুরুতে অজানাই থেকে যাবে সংক্রমিত হওয়ার 2 থেকে 10 দিনের মধ্যে প্রথম উপসর্গগুলি ফুটে ওঠে কিছু সাধারণ উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে জ্বর মাথাব্যথা দুর্বলতা বমি বমি ভাব পেশিতে ব্যথা জলভরা ফোস্কা যা উপস্থে মলদ্বারে নিতম্বে অথবা ঠোঁটে একটি অথবা বেশি হয় প্রস্রাব করার সময় জ্বালা ভাব উপস্থে ব্যথা যোনি সংক্রান্ত স্রাবজলভরা ফোস্কা ফেটে যায় এবং একটি দাগ রাখা ছাড়াই আবরণের গঠন নিরাময় হয় সংক্রমণটি হওয়ার 15 থেকে 23 দিনের মধ্যে এটা হয় সংক্রমণ আবার হওয়ার ক্ষেত্রে ঐ স্থানে কোন ফ্লুয়ের মতো উপসর্গ থাকে না এবং ঘা টি যন্ত্রণা মুক্ত হয় ফোস্কাগুলোর সংখ্যা সময়ের সাথে কমতে থাকে আর এক সপ্তাহের মধ্যে ঠিক হয়ে যায় বিভিন্ন ব্যক্তির ভিন্ন ভিন্ন লক্ষণের অভিজ্ঞতা হতে পারে জেনিটাল হারপিস দুটো ভাইরাসের কারণে হয় হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস 1(এইচএসভি 1) এবং এইচএসভি 2 (HSV 2) এইচএসভি 2 হল উপস্থ মলদ্বার এবং নিতম্বের আলসারের সাধারণ কারণ এবং এইচএসভি 1 (HSV 1)হল মৌখিক স্থানেরহারপিস ভাইরাস সংক্রামিত ক্ষত থেকে যৌন সহবাসের সময় প্রেরিত হয় (যোনি সংক্রান্ত মলদ্বার বা ওরাল সেক্স) সংক্রামিত ব্যক্তির উপর কোনও ক্ষত না থাকলেও সংক্রমণটি প্রেরণ করা যেতে পারে যদি আপনি উপরে উল্লেখ করা উপসর্গগুলির অভিজ্ঞতা অর্জন করেন তবে আপনার ও আপনার সঙ্গীর ডাক্তারের থেকে পরামর্শ নেওয়া উচিত ডাক্তার প্রথমে ভাইরাসের সনাক্ত করতে ক্ষত থেকে তরলের নমুনা সংগ্রহ করবেন (যদি থাকে) যদি ক্ষত না দেখা যায় তবে অ্যান্টিবডি সনাক্ত করার জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয়পুনরাবৃত্ত সংক্রমণের তীব্রতা এবং সময় হ্রাস করার জন্য আপনার ডাক্তার অ্যান্টিভাইরাল ওষুধগুলি নির্ধারণ করবেন ব্যথা কমানোর জন্য ওষুধেরও পরামর্শ দেওয়া হয় দুর্ভাগ্যবশত ঐ স্থানের কোন নিরাময় উপলব্ধ নেই কিন্তু আপনি এইগুলির দ্বারা ছড়িয়ে পড়া কমাতে পারেনযৌনসহবাসের সময় একটি কন্ডোমের ব্যবহার করে যদি আপনার এবং আপনার সঙ্গীর ক্ষত সক্রিয় হয় তবে যৌনসহবাস এড়িয়ে চলে একাধিক সঙ্গী এড়িয়ে চলে ফিমেল হাইপোগোনাডিজম হলো এক ধরণের অসুখ যা মহিলাদের শরীরে দেখা যায় এক্ষেত্রে মহিলাদের জননাঙ্গগুলি কাজ করতে অক্ষম হয়ে যায় বিশেষ করে ডিম্বাশয় তাদের স্বাভাবিক কাজকর্ম করতে না পারায় বিকল হয়ে পড়ে কখনও কখনও এর ফলে মহিলা হরমোন তৈরি হওয়া একেবারেই বন্ধ হয়ে যায় নারী শরীরে আবার কখনও এই হরমোন নিঃসরণের মাত্রা হ্রাস পায় মহিলাদের শরীরে এই সমস্যা দেখা দেওয়ার কারণ হলো পিটুইটারি গ্রন্থি মস্তিষ্কে অবস্থিত হাইপোথ্যালামাস এবং মহিলাদের প্রজনন অঙ্গগুলির স্বাভাবিক কাজকর্ম না করা এবং তাদের মধ্যে সমন্বয়ের অভাব আর তার ফলে ডিম্বাশয় থেকে যে ফলিকল স্টিমুলেটিং হরমোন (এফএসএইচ) লুটিনাইজিং হরমোন (এলএইচ) বের হয় তাতে ঘাটতি দেখা যায় বা তা একেবারেই বের হওয়া বন্ধ হয়ে যায় মহিলাদের শরীরের এই অবস্থাকে হাইপোগোনাডোট্রপিক হাইপোগোনাডিজম (এইচএইচ) বলে ফিমেল হাইপোগোনাডিজমের সঙ্গে যুক্ত মুখ্য লক্ষণ ও উপসর্গবয়ঃ সন্ধি না আসা স্তন গঠন না হওয়া ও পিউবিক হেয়ার বা যৌনাঙ্গে লোম না ওঠার মতো একাধিক নারী শরীরের বৈশিষ্ট্যের অনুপস্থিতি উচ্চতা না বাড়া ঋতুস্রাব না হওয়া (আরও পড়ুন অ্যামেনোরিয়ার কারণ ও চিকিৎসা) বারবার মেজাজে পরিবর্তন আসা কাজকর্ম করতে গেলে দুর্বল লাগা ও ক্লান্তি অনুভব শরীরে গরম অনুভূত হওয়া হাইগোনাডিজম রোগ যদি জন্মসূত্রে রোগীর দেহে এসে থাকে তাহলে ঘ্রাণের অনভূতির অভাবও দেখা দেয় (একে কালম্যান সিন্ড্রোম বলে) পিটুইটারি গ্রন্থিতে টিউমার হলে শরীরে অন্যান্য হরমোনের ঘাটতি আর সেই সঙ্গে মাথাব্যথা ইত্যাদির মতো সমস্যা ফিমেল হাইপোগোনাডিজম জন্মের সময় থেকে হতে পারে অথবা পরে কোনও কারণে হতে পারে ফিমেল হাইপোগোনাডিজমের জন্য যে সমস্ত গুরুত্বপূর্ণ কারণগুলি দায়ী থাকে তা হল জিনের অস্বভাবিক অথবা জন্মগত ত্রুটি দীর্ঘস্থায়ী সংক্রমণ অথবা প্রদাহের মতো দীর্ঘস্থায়ী অসুখ অটোইমিউন ডিজঅর্ডার অপুষ্টি (অত্যাধিক ওজন হ্রাস) অত্যাধিক শারীরিক করসৎ (খেলোয়ারদের মতো) স্টেরোয়েডযুক্ত ওষুধের উচ্চমাত্রা ওষুধের অপব্যবহার মানসিক চাপ বৃদ্ধি পিটুইটারি গ্রন্থি ও হাইপোথ্যালামাস সংক্রান্ত টিউমার অথবা আঘাত ব্রেন ক্যান্সারের চিকিৎসায় রেডিয়েশন থেরাপি শরীরে আয়রন বা লোহার মাত্রা বৃদ্ধি পাওয়া ফিমেল হাইপোগোনাডিজম বা মহিলা হরমোনের অভাবজনিত সমস্যা হয়েছে কি না তা চিকিৎসক যেসব পদ্ধতির সাহায্যে নির্ধারণ করেনচিকিৎসা সংক্রান্ত বিস্তারিত ইতিহাস বিভিন্ন উপসর্গ মেনার্ক বা ঋতুস্রাবের শুরু এবং মেনস্ট্রুয়াল সাইকেল বা ঋতুচক্রের ব্যপারে সঠিক তথ্য পরিবারের জিনগত অবস্থা অতীত ও বর্তমানের শারীরিক অসুস্থতা রেডিয়েশন কেমোথেরাপি অথবা কর্টিকোস্টেরয়েড ও ওপিয়েটস জাতীয় ওষুধের ব্যবহার অতীত করা হয়েছিল বা বর্তমানে করা হচ্ছে কি না মানসিক চাপ মানসিক অবসাদ ও উদ্বিগ্ন হওয়া যৌনাঙ্গে লোম ওঠা ও স্তনের গঠন হয়েছে কি না এসবের মতো যৌন বৈশিষ্ট্যমূলক শারীরিক পরীক্ষা রক্ত পরীক্ষা এফএসএইচের মাত্রা দেখার জন্য গোনাডোট্রপিন হরমোন নিঃসরণের জন্য জিএনআরএইচ ইনজেকশন প্রয়োগের পর এলএইচ মাত্রা দেখার জন্য থাইরয়েড হরমোন প্রোল্যাক্টিন হরমোন ও টেস্টোস্টেরনের মাত্রা জানতে আয়রনের মাত্রা নিশ্চিত করতে ক্রোমোজোমের ত্রুটি (যেমন টার্নার সিন্ড্রোম কালম্যান সিন্ড্রোম) আছে কি না তা নিশ্চিত করতে কেরিওটাইপিং করা হয় পিটুইটারি গ্রন্থি ও হাইপোথ্যালামাসে টিউমার হয়েছে কি না তা সনাক্ত করতে মস্তিষ্কের ম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) করা হয়ফিমেল হাইপোগোনাজিডমের চিকিৎসা হলো সমস্যার কারণটির চিকিৎসা করা সাধারণত যেসব চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করা হয় জিএনআরএইচ ইনজেকশন হিউম্যান কোরিওনিক গোনাডোট্রোপিন (এইচসিজি) ইনজেকশন এস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরন জাতীয় গর্ভনিরোধক ওষুধ খাওয়া খাদ্য ও পুষ্টি তালিকায় সংশোধন চাপ সামলানো ক্যালসিয়াম ও ভিটামিন সাপ্লিমেন্ট জরায়ুর অভ্যন্তরীন স্তর এন্ডোমেট্রিয়াম নামে পরিচিত যখন এন্ডোমেট্রিয়ামের কোষগুলি অনিয়ন্ত্রিতভাবে বাড়তে থাকে তার ফলে এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার (জরায়ুর ক্যান্সার) হয় সাধারণত এটি এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়া হিসাবে দেখা দেয় প্রথমে এবং পরে তা ক্যান্সারে পরিণত হয় এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের (জরায়ুর ক্যান্সার) উপসর্গগুলো শুরুতে জরায়ুতে সীমাবদ্ধ থাকে এবং ধীরে ধীরে তা ছড়াতে পারে বা সাধারণ উপসর্গগুলো দেখা দিতে শুরু করে যেমন যোনি থেকে অস্বাভাবিক রক্তপাত যেটা অত্যন্ত বেশী হতে পারে বা দুটি মাসিক চক্রের মাঝখানেও হতে পারে মেনোপসের পরেও যোনি থেকে রক্তপাত শ্রোণীদেশে ব্যথা ডিস্পারেইউনিয়া অস্বাভাবিক যোনিগত নিঃসরণ (রক্তের ছিটে সহ বা হলুদ বর্ণের) ওজন হ্রাস ক্লান্তি ক্ষুধামান্দ্য এন্ডোমেট্রিয়াম সংবেদনশীল হয়ে পড়ে ডিম্বাশয়ের হরমোনের ক্রিয়ার দ্বারা বিশেষত ইস্ট্রোজেনের দ্বারা যাইহোকএন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের (জরায়ুর ক্যান্সার) সঠিক কারণ এখনো জানা যায় নি একজন মহিলার এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার হওয়ার অনেকগুলি ঝুঁকি বা প্রবণতামূলক কারণ আছে সেগুলো হলপারিবারিক ইতিহাস (মা বা বোনের এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সার হলে বা জরায়ুতে ফাইব্রয়েডস হলে) তাড়াতাড়ি মাসিক চক্র শুরু হলে বন্ধ্যাত্ব স্থূলতা হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপির দীর্ঘ ব্যবহার (এইচআরটি) স্তন ক্যান্সারের ওষুধ (ট্যামোক্সিফেন) সম্পূর্ন চিকিৎসাগত ইতিহাস ও তার সাথে শারীরিক পরীক্ষা এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের (জরায়ুর ক্যান্সার) সনাক্তকরণে সাহায্য করে এছাড়াও কিছু অনুসন্ধান দরকার ক্যান্সারের বিস্তার পরীক্ষা করার জন্যপেলভিক আল্ট্রাসাউন্ড – এন্ডোমেট্রিয়ালের ঘনত্ব পরীক্ষা করার জন্য ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড – সঠিকভাবে এন্ডোমেট্রিয়ামের পরিবর্তনগুলি চিহ্নিত করার জন্য হিস্টেরোস্কপি – এন্ডোস্কোপের সাহায্যে এন্ডোমেট্রিয়াম পর্যবেক্ষণ করা যা জরায়ুর অভ্যন্তরীন স্তরে অস্বাভাবিকতার ইঙ্গিত দিতে পারে এন্ডোমেট্রিয়াল বায়োপসি – বেশ কয়েকটি ছোট ছোট টিস্যু বা শরীরকলার নমুনা মাইক্রোস্কোপের নিচে পরীক্ষা করা হয় এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের (জরায়ুর ক্যান্সার) প্রকৃতি জানার জন্য পেলভিক বা শ্রোণীদেশের সি টি স্ক্যান – এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের স্টেজ বা স্তরটি সনাক্তকরণে সাহায্য করে পোজিট্রন এমিসন টোমোগ্রাফি/সি টি স্ক্যান – এন্ডোমেট্রিয়াল কোষের বিস্তার দেখার জন্যযদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পরে এটা সঠিক চিকিৎসার সাহায্যে সেরে যায় এন্ডোমেট্রিয়াল ক্যান্সারের চিকিৎসাগুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল অস্ত্রোপচার – এটি চিকিৎসার প্রথম ধাপ যদি প্রাথমিক অবস্থায় ধরা পড়ে ডিম্বাশয় ও ফ্যালোপাইন টিউব সহ জরায়ু বাদ দেওয়া হয় রেডিয়েশন থেরাপি – ক্যান্সারের কোষ নির্মূল করার জন্য প্রোটন রশ্মি ব্যবহার করা হয় কোন কোন ক্ষেত্রে রেডিয়েশনের সাহায্যে বড় আকারের টিউমার কে সংকুচিত করা হয় এবং তৎপরবর্তীকালে সেটি অপারেশন করে বাদ দেওয়া হয় হরমোন থেরাপি – সেবনের জন্য হরমোনের প্রস্তুতিকরণ ব্যবহার করা হয় যা ইস্ট্রোজেনের মাত্রা কমিয়ে দেয় বা প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বাড়িয়ে দেয় ফলত টিউমার কোষ সংকুচিত হয় কেমোথেরাপি – সেবনের জন্য বা শিরায় প্রদানের জন্য কেমোথেরাপিউটিক এজেন্ট ব্যবহার করা হয় ক্যান্সারের কোষ নির্মূল করতে কেমোথেরাপিউটিক ওষুধও টিউমার সংকোচনে সাহায্য করে ফলত অপারেশন করে টিউমার বাদ দেওয়া সুবিধাজনক হয় এন্ডোমেট্রিয়াম জরায়ুর সবচেয়ে ভিতরের স্তর মাসিক চক্রের সময় রক্তের সাথে অপসারিত হয়ে যায় এই স্তরটি ডিম্বাশয়ের হরমোন ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের প্রতি সংবেদনশীল হয় এন্ডোমেট্রিওসিস তখনই হয় যখন এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু বা শরীরকলা জরায়ুতে না হয়ে ফ্যালোপাইন টিউব ডিম্বাশয় বা অন্য কোনো অঙ্গে সৃষ্টি হয় এটি একটি খুবই যন্ত্রনাদায়ক অবস্থা এবং কখনও কখনও এতটাই গুরুতর হয়ে যায় যে এর ফলে শ্রোণী অঞ্চলের অঙ্গগুলি একে অপরের সাথে আঁটিয়া যায় এন্ডোমেট্রিওসিসের উপসর্গগুলো নির্ভর করে কোন এলাকায় এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যুগুলি সৃষ্টি হয়েছে তার উপর এন্ডোমেট্রিওসিসের কিছু সাধারণ উপসর্গ নিচে উল্লেখ করা হল মাসিক চক্রের সময় পেটে বা শ্রোণী অঞ্চলে প্রচন্ড ব্যথা (ডিস্মেনোরিয়া) ডিসস্প্যারিউনিয়া (যৌন মিলনের সময় ব্যথা) মাসিক চক্রের সময় অস্বাভাবিকভাবে প্রচুর (মেনোরেজিয়া) বা দীর্ঘকালীন (মেট্রো্রেজিয়া) রক্তপাত বন্ধ্যাত্ব মুত্রত্যাগের সময় ব্যথা অনুভব ও মলত্যাগের সময় ব্যথা অনুভব করা অবসাদ (বিশেষ করে মাসিক চক্রের সময়) এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু যখন ডিম্বাশয়ে ফ্যালোপাইন টিউবে বা শ্রোণী অঞ্চলের অন্য কোন অঙ্গে সৃষ্টি হতে শুরু করে তখন এন্ডোমেট্রিওসিস হয় এটা বিভিন্ন কারণে হতে পারে মাসিকচক্রের রক্ত যখন শরীরের বাইরে না বেরিয়ে ভিতরে প্রত্যাবর্তন করে – যখন মাসিক চক্রের রক্ত বাইরে না বেরিয়ে ভিতরে প্রত্যাবর্তন করে এবং ফ্যালোপাইন টিউবে বা ডিম্বাশয়ে ফিরে যায় (বিপরীত গতি) তখন ফ্যালোপাইন টিউবে বা ডিম্বাশয়ে এন্ডোমেট্রিয়াল কোষ জন্মাতে শুরু করে অপারেশনের ফলে প্রতিস্থাপন – সিজারিয়ান পদ্ধতিতে প্রসবের কালে অপারেশন বা হিস্টারোস্কোপিতে এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু শ্রোণী অঞ্চলের অঙ্গে জন্মাতে পারে পেরিটোনিয়াল কোষের পরিবর্তন – কিছু্ রোগ প্রতিরোধ সংক্রান্ত জটিলতা বা হরমোনগত কারণে পেরিটোনিয়াল কোষ এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যুতে পরিবর্তিত হয় এন্ডোমেট্রিয়াল কোষ অপসারণ – এন্ডোমেট্রিয়াল কোষ অন্য কোনো অঙ্গে পৌঁছাতে পারে রক্ত বা লসিকার মাধ্যমে এম্ব্রায়োনিক কোষের রূপান্তর – বয়ঃসন্ধিকালে ইস্ট্রোজেনের কারণে এম্ব্রায়োনিক কোষ এন্ডোমেট্রিয়াল কোষে রূপান্তরিত হয় সম্পূর্ন চিকিৎসাগত ইতিহাস ও সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা (শ্রোণী অঞ্চলের পরীক্ষাও এর অন্তর্গত) সাধারণত এন্ডোমেট্রিওসিস সনাক্তকরণে সাহায্য করে তা সত্ত্বেও কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা করা হয় নির্ণয়টিকে নিশ্চিত করতে এবং এই রোগ কতটা ছড়িয়েছে তা দেখার জন্য শ্রোণী অঞ্চলের আল্ট্রাসাউন্ড – এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু শ্রোণী অঞ্চলের কোন অঙ্গে বাসা বেঁধেছে কি না তা উদ্ঘাটন করে ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড – এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যুর উপস্থিতি আরো সঠিকভাবে নির্ণয় করার জন্য শ্রোণী অঞ্চলের অঙ্গে ল্যাপারোস্কপি – এন্ডোমেট্রিয়াল টিস্যু এন্ডোস্কোপির সাহায্যে দেখা হয় ও তার সাথে বায়েপসি করে নির্ণয়টিকে নিশ্চিত করা হয় ম্যাগনেটিক রেজোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) – এন্ডোমেট্রিয়াল যে স্থানটিতে সৃষ্টি হয়েছে সেটির অবস্থান নির্ণয় ও এর আকৃতি নির্ণয় করতে সাহায্য করেএন্ডোমেট্রিওসিসের চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি হল সেবনের ওষুধ দ্বারা চিকিৎসা – ব্যথা কমানোর ওষুধ ডিস্মেনোরিয়াকে প্রশমিত করার জন্য হরমোন থেরাপি – ব্যথা কমাতে মাসিক চক্র নিয়মিত হওয়ার জন্য ও রক্তপ্রবাহ কম করতে সার্জারী (কনজারভেটিভ থেরাপি) – অপারেশনের দ্বারা সৃষ্টি হওয়া বা রূপান্তরিত এন্ডোমেট্রিয়াল ইস্যু বাদ দেওয়া হয় গুরুতর ক্ষেত্রে জরায়ু ডিম্বাশয় ও ফ্যালোপাইন টিউবসহ অপারেশন করে বাদ দেওয়া হয় (হিস্টেরেক্টমি) জরায়ু তিনটি স্তরে গঠিত যেমন পেরিমেট্রিয়াম মায়োমেট্রিয়াম এবং এন্ডোমেট্রিয়াম এন্ডোমেট্রিয়াম জরায়ুর সবচেয়ে ভিতরের স্তর ছোট ছোট এপিথেলিয়াল কোষ দিয়ে গঠিত যেগুলো ডিম্বাশয় থেকে নিষ্কাশিত হরমোনের প্রভাবে জন্মায় এন্ডোমেট্রিয়াম অর্থাৎ যেটি প্রতি মাসিক চক্রের সময় জন্মায় ও ঝরে পড়ে তার ফলস্বরুপ রক্তপাত হয় ইস্ট্রজেনের মাত্রায় কিছু পরিবর্তনের ফলে এন্ডোমেট্রিয়ামটির ঘনত্ব বজায় থাকে এবং এই অবস্থাকেই এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়া (এন্ডোমেট্রিক হাইপারপ্লাসিয়া) বলে এটা ক্যান্সার নয় কিন্তু্ কিছু ক্ষেত্রে এটা ক্যান্সারের কারণ হতে পারে এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়ার উপসর্গগুলি শুধুমাত্র জরায়ুতে সীমিত নয় এটি কিছু সাধারণ উপসর্গও সৃষ্টি করতে পারে যেগুলো হল অস্বাভাবিক মাসিক রজঃস্রাব (প্রচন্ড রক্তপাত অথবা ঘনঘন মাসিক হওয়া) দুটি মাসিক চক্রের মাঝখানেও রক্তপাত মেনোপজ বা রজোবন্ধের পরেও যোনি থেকে রক্তপাত অতিরিক্ত রক্তক্ষরণের জন্য রক্তাল্পতা দূর্বলতা এন্ডোমেট্রিয়াম ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের স্তরের হ্রাসবৃদ্ধির প্রতি খুবই সংবেদনশীল সাধারণত ইস্ট্রোজেনই উদ্দীপিত করে এন্ডোমেট্রিয়াল স্তরটির ঘনত্ব বৃদ্ধি হতে যখন ইস্ট্রোজেনের মাত্রা বেশী থাকে এবং প্রোজেস্টেরনের মাত্রা তুলনামুলক কম থাকে তখনই এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়া হয় নিম্নলিখিত বিশেষত্বগুলো যে সমস্ত মহিলার মধ্যে দেখা যায় তাদের এই রোগটি হবার সম্ভাবনা থাকে স্থূলতা দীর্ঘদিন যাবৎ হরমোন প্রতিস্থাপন থেরাপি (এইচআরটি) নেওয়া বন্ধ্যাত্ব পলিসিস্টিক ওভারিয়ান ডিজিজ (পিসিওডি) রোগীর চিকিৎসাগত ইতিহাস ও তার সাথে শারীরিক পরীক্ষা থেকে এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়া নির্ণয় করা যায় কিছু পরীক্ষার কথা নিচে উল্লেখ করা হল যেগুলো এটি নির্ণয় করতে তথা ক্যান্সারের সনাক্তকরণে সাহায্য করে পেলভিক আল্ট্রাসাউন্ড – এন্ডোমেট্রিয়ামের ঘনত্ব দেখার জন্য এবং এটির কারণ নির্ণয়ের জন্য ট্রান্সভ্যাজাইনাল আল্ট্রাসাউন্ড – এন্ডোমেট্রিয়ামের পরিবর্তন আরো পরিষ্কার ভাবে দেখার জন্য হিস্টেরোস্কপি – এন্ডোস্কোপের সাহায্যে এন্ডোমেট্রিয়ামটি পর্যবেক্ষণ করা এন্ডোমেট্রিয়াল বায়োপসি – ছোট টিস্যু বা শরীরকলার নমুনা নিয়ে মাইক্রোস্কোপের নীচে মূল্যায়ন তথা ক্যান্সারের সনাক্তকরণ করা হয়ক্যান্সারের সনাক্তকরণের জন্য নিয়মিত পেলভিক আল্ট্রাসাউন্ড প্রতি 23 বছরে করা হয়এন্ডোমেট্রিয়াল হাইপারপ্লাসিয়ার চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি হল পর্যবেক্ষণ – এটি সবচেয়ে সাধারণ একটি প্রক্রিয়া যা ব্যবহার করা হয় কারন মেনোপজের পরে ইস্ট্রোজেনের অনুপস্থিতিতে হাইপারপ্লাসিয়া অকার্যকরী হয়ে যায় বা এটির উপসর্গগুলোও প্রশমিত হয়ে যায় ওষুধের দ্বারা চিকিৎসা – প্রোজেস্টেরন ট্যাবলেট দেওয়া হয় ওরাল থেরাপি হিসাবে সেইসব মহিলাদের যাদের উপসর্গ স্পষ্ট দেখা যায় বা যাদের মেনোপজের পরেও যোনি থেকে রক্তপাত হয় অস্ত্রোপচারের দ্বারা চিকিৎসা – কোনো কোনো রোগীর ক্ষেত্রে চিকিৎসা হওয়া সত্বেও উপসর্গ রয়েই যায় এন্ডোমেট্রিয়ামটি বার করে দেওয়া হয় এন্ডোমেট্রিয়াল অ্যাবলেশন পদ্ধতিতে বা খুব গুরুতর ক্ষেত্রে পুরো জরায়ুটিকে ডিম্বাশয় সহ বাদ দিয়ে দেওয়া হয় ডিমেনশিয়া হল একধরণের ক্লিনিক্যাল উপসর্গ যেখানে বৌদ্ধিক বা জ্ঞানীয় কার্যকারিতা কমে যায় এর অনেকগুলি উপসর্গ রয়েছে যা বিভিন্ন রোগে ঘটে এটি বৌদ্ধিক এবং ব্যবহারিক কার্যকারিতার বৈশিষ্ট্যকে কম করে যা একজনের দৈনন্দিন জীবনকে প্রভাবিত করে এটি একটি বিশ্বব্যাপী সংকট এবং 4 মিলিয়নের বেশি ভারতীয় ডিমেনশিয়ার কিছু গঠনের দ্বারা আক্রান্ত ডিমেনশিয়ার উপসর্গগুলি সাধারণত গুপ্ত ভাবে শুরু হয় এবং ধীরে ধীরে বৃদ্ধি পেতে লক্ষ্য করা যায়সাধারণভাবে যুক্ত লক্ষণ ও উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছে শেখার ক্ষমতা কমে যাওয়া স্মৃতিশক্তি হ্রাস পাওয়া ব্যক্তিত্ব এবং মেজাজ পরিবর্তন চিন্তা শক্তি কমে যাওয়া প্রাথমিক পর্যায়ের উপসর্গগুলি বিষন্নতা এবং উদাসীনতা পরবর্তী পর্যায়ের উপসর্গগুলি অধীরতা রাগের প্রবণতা বিভ্রম এবং ভুল বকা অন্তিম পর্যায়ের উপসর্গগুলি অসংযম চলাফেরায় অসুবিধা খাবার গিলতে সমস্যা এবং পেশিতে খিঁচুনি স্নায়ু কোষগুলির ব্যাপক ক্ষতি ডিমেনশিয়ার উপসর্গগুলি সৃষ্টি করেসবচেয়ে সাধারণ কারণ হল অ্যালঝাইমারের রোগ যা স্বল্পমেয়াদী স্মৃতির ঘাটতির সাথে যুক্তডিমেনশিয়ার অন্যান্য সাধারণ কারণগুলি হল ভাস্কুলার (সংবহনতান্ত্রিক) ডিমেনশিয়া এটি মস্তিষ্কে সরবরাহকারী রক্তবাহী কোষগুলির ক্ষতির ফলে ঘটে লেওই বডি ডিমেনশিয়া লেওই বডিগুলি অস্বাভাবিক প্রোটিনের বোঝাই হয় যা মানুষের বৌদ্ধিক কার্যকারিতায় প্রভাব ফেলে ফ্রন্টোটেম্পোরাল ডিমেনশিয়া মস্তিষ্কের এলাকার স্নায়ু কোষগুলির অবনতি যা ব্যক্তিত্ব ভাষা এবং আচরণকে নিয়ন্ত্রণ করে মিশ্র ডিমেনশিয়া গবেষণায় দেখা গেছে 80 বছর এবং তার বেশি বয়সী মানুষের উপরে উল্লিখিত ডিমেনশিয়ার মিশ্র প্রভাব রয়েছে অন্যান্য বিরল কারণগুলি হান্টিংটনের রোগ পারকিনসনের রোগ আঘাতমূলক মস্তিষ্কের ক্ষত বিপাকীয় এবং এন্ডোক্রাইন রোগ ওষুধগুলি থেকে বিপরীত প্রতিক্রিয়া বিষ এবং মস্তিষ্কে টিউমার ডিমেনশিয়ার নির্ণয়ের জন্য রোগীর মেডিকেল ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার প্রয়োজনপরামর্শের সময় বৌদ্ধিক কার্যকারিতার মূল্যায়ন করা হয় কিন্তু অতিরিক্ত পরীক্ষার প্রয়োজনও হতে পারে মিনিমেন্টাল স্টেট এক্সামিনেশন (এমএমএসই) হল বৌদ্ধিক কার্যকারিতা মূল্যায়নের জন্য সবচেয়ে ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত পরীক্ষাপ্রয়োজন হলে আরও অনুসন্ধানগুলি অন্তর্ভুক্ত হতে পারে রক্ত পরীক্ষা মস্তিষ্কের এমআরআই বা সিটি স্ক্যান ইইজি (ইলেক্ট্রোএন্সেফালোগ্রাম)ওষুধের সাথে চিকিৎসায় খুব সামান্য প্রতিক্রিয়া দেখায় কেমিক্যালগুলির বৃদ্ধির জন্য ওষুধের পরামর্শ দেওয়া হয় যা স্নায়ুতে সংকেত পাঠায় কিন্তু শুধুমাত্র ডিমেনশিয়ার প্রাথমিক থেকে মধ্যম পর্যায়ের সময় এগুলিকে কার্যকর হতে দেখা গেছেঘুমের সমস্যার ক্ষেত্রে এন্টিডিপ্রেসেন্টগুলি কার্যকরএন্টিসাইকোটিকের ব্যবহারে মৃত্যুর একটি বিশাল ঝুঁকির ভঙ্গি দেখানো হয়েছেসহায়তাকারী যত্ন ডিমেনশিয়ার রোগীদের ব্যবস্থাপনায় একটি প্রধান ভূমিকা পালন করে উপসর্গগুলি বাড়ার সাথে সাথে সহায়তার প্রয়োজনও বাড়ে ডিলিউশনাল ডিজঅর্ডার এক ধরনের মনোব্যাধি এবং একটি গুরুতর মানসিক অসুস্থতা যার বৈশিষ্ট্য হল অস্বাভাবিক বিষয়কে দৃঢ়তার সঙ্গে বিশ্বাস করা এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অসত্য কল্পনাকে সত্যি বলে মনে করেন এবং অভিজ্ঞতামূলক প্রমাণকে সম্পূর্ণভাবে উপেক্ষা করেন এটি পূর্বে প্যারানয়েড ডিজঅর্ডার নামে পরিচিত ছিল এটির খুব সাধারণ লক্ষণ হল অবাস্তব বিভ্রমের উপস্থিতিঅন্যান্য উপসর্গগুলি হল অস্বাভাবিক মেজাজ পরিবর্তন আক্রান্ত ব্যক্তি সাধারণ কাজকর্মে বিরক্তি প্রকাশ বা অনেক সময় অনিচ্ছা প্রদর্শন করতে পারেন ডিলিউশনাল সঙ্গে অদ্ভুত ব্যবহার এবং হ্যালুসিনেশন বা অমূলকপ্রত্যক্ষ করা যুক্ত বিশৃঙ্খল চিন্তাধারা বিকৃত যুক্তি আত্মপক্ষ সমর্থনে অতিরিক্ত সজাগ থাকা যখন বিষয়টি বা অবস্থাটি অতটা গুরুত্বপূর্ণ নয় প্রধান কারণগুলি হল জিনগত কারণ এটা দেখা গিয়েছে যে ডিলিউশনাল ডিজঅর্ডার হওয়ার সম্ভবনা বেশি থাকে যদি পরিবারের কোন সদস্য মনোরোগী হয় বা স্কিজোফ্রেনিয়ায় আক্রান্ত হয় জৈবিক কারণ স্নায়ুতন্ত্রে রাসায়নিকের ভারসাম্যহীনতা পরিবেশগত বা মানসিক কারণ মানসিক আঘাত বা মানসিক চাপ পূর্বেও থাকার ইতিহাস অ্যালকোহল বা ড্রাগের নেশাগ্রস্ত বধির মানুষদের ডিলিউশনাল ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়া খুব সাধারণ বিষয় চোখে কম দেখেন এমন কোন সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন ব্যক্তি বা অন্য অসুস্থতা বা প্রবাসীদের মধ্যেও ডিলিউশনাল ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়ার সম্ভবনা অনেক বেশি অন্যান্য মনোরোগের মতো ডিলিউশনাল ডিজঅর্ডারেরও নির্দিষ্ট কোন চিকিৎসা পদ্ধতি নেইরোগ নির্ণয়ের জন্য সঠিক ডাক্তারি ইতিহাস এবং চিকিৎসা কেন্দ্রে পরীক্ষার প্রয়োজন স্নায়ুর পরীক্ষার সাথে রেডিওগ্রাফিক পরীক্ষা রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে ইলেকট্রোএনসেফ্যালোগ্রাফি খুব কার্যকরী ডিলিউশনাল ডিজঅর্ডার সনাক্ত করতে ও অবস্থা বিচার করতেডিলিউশনাল ডিজঅর্ডারের চিকিৎসায় ওষুধ এবং মানসিক বা সাইকোলজিক্যাল থেরাপি উভয়ের প্রয়োজনওষুধের মধ্যে রয়েছে অ্যান্টিসাইকোটিকস অ্যান্টিডিপ্রেসান্টস এবং ট্রানকু্লাইজারস হাসপাতালে ভর্তি এবং যত্নের প্রয়োজন হয় গুরুত্বপূর্ণ ক্ষেত্রেসাইকোথেরাপি ব্যক্তিবিশেষ এবং পরিবারের সদস্যদের একসাথে দেওয়া হয় এবং পাশাপাশি আক্রান্ত ব্যক্তিকে বৌদ্ধিক এবং আচরণগত থেরাপি দেওয়া হয় ব্যক্তিবিশেষের জন্য ব্যবহৃত থেরাপিতে ব্যক্তির বিকৃত এবং অবাস্তব চিন্তাকে চিহ্নিত করে এবং তা সংশোধন করতে সাহায্য করা হয়পারিবারিক ক্ষেত্রে ব্যবহৃত থেরাপিতে পরিবারের সদস্যদের শেখানো হয় ডিলিউশনাল ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত রোগীর সাথে ব্যবহারের সঠিক পদ্ধতিবৌদ্ধিক আচরণগত থেরাপিতে রোগীর মানষিক ও সামাজিক বিষয়ে জ্ঞাত হয়ে তার চিন্তা এবং ব্যবহারকে পরিবর্তন ও সংশোধন করতে সাহায্য করে ক্ল্যামাইডিয়া হলো সাধারণ একটি যৌন কারণ ঘটিত সংক্রমণ পুরুষ ও নারী উভয়েই এতে আক্রান্ত হয় ক্ল্যামাইডিয়া ট্র্যাকোমাটিস নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে এই রোগ হয়যে ব্যক্তির এই অবস্থা একবার হয়েছে তিনি ফের সংক্রমিত হতে পারেন যদি তার শরীরে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করে কিছু ব্যক্তির ক্ল্যামাইডিয়া থাকলেও তাঁরা কোনও উপসর্গই উপলব্ধি করতে পারেন না যতক্ষণ না পর্যন্ত তাঁরা সংক্রমিত ব্যক্তির সংস্পর্শে আবার আসছেনপুরুষদের মধ্যে দেখতে পাওয়া সাধারণ উপসর্গগুলি হলো প্রস্রাবের সময় জ্বালাভাব লিঙ্গ থেকে স্রাব বের হওয়া সঙ্গে জ্বালাভাবমহিলাদের ক্ষেত্রে উপসর্গগুলি হলোঋতুস্রাবের সময় যোনির থেকে রক্তপাত যৌনসঙ্গমের সময় ব্যথা তলপেটে ব্যথা ও জ্বর প্রস্রাবের সময় চুলকানি অথবা জ্বালাভাবনাবালকদের ক্ষেত্রে চোখ ও ফুসফুসে সংক্রমণ হলে যেসব উপসর্গ দেখা যায় তাও দেখা দিতে পারে এতে কোনও ব্যক্তি যৌনসঙ্গমের মাধ্যমেও ক্ল্যামাইডিয়ায় আক্রান্ত হতে পারেন সংক্রমিত সঙ্গী বা সঙ্গীনির সঙ্গে মৌখিক পায়ু অথবা যোনিতে যৌনসঙ্গমের ফলেও সংক্রমণের ঝুঁকি থাকে সংক্রমিত মা জন্ম দেওয়ার সময় তাঁর সন্তানের দেহে এই সংক্রমণ অতিবাহিত করতে পারেন অসুরক্ষিত যৌন সম্পর্ক বা একাধিক ব্যক্তির সঙ্গে যৌনসঙ্গম আপনাকে ক্ল্যামাইডিয়ার মতো যৌন কারণ ঘটিত সংক্রমণের ঝুঁকির দিকে ঠেলে দিতে পারে যদি আপনার কোনও উপসর্গ না থেকে থাকে কিন্তু মনে হচ্ছে আপনি ক্ল্যামাইডিয়ার সংস্পর্শে এসে থাকতে পারেন তাহলে চিকিৎসককে নিজের যৌন ইতিহাস জানানো জরুরি মহিলাদের ক্ষেত্রে সংক্রমণ পরীক্ষা করার জন্য যোনির স্রাবের নমুনা সংগ্রহ করা হয় পুরুষদের ক্ষেত্রে মূত্র পরীক্ষা করা হয়চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি নিম্নরূপ যেহেতু এটি ব্যাকটেরিয়া ঘটিত সংক্রমণ তাই ক্ল্যামাইডিয়ার জন্য অ্যান্টিবায়োটিকগুলিই আদর্শ চিকিৎসা যে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি দেওয়া হয়েছে তার ধরন অনুসারে কোর্স 1014 দিন পর্যন্ত হতে পারে সংক্রমণ থেকে সম্পূর্ণভাবে মুক্ত হওয়া নিশ্চিত করতে কোর্সটি সম্পূর্ণ করা দরকার মহিলাদের ক্ষেত্রে ইউটেরাস বা জরায়ু ও সার্ভিক্স বা জরায়ুর গ্রীবায় সংক্রমণ ছড়িয়ে পরার মতো জটিলতা বন্ধ্যাত্বের মতো আরও মারাত্মক আকার নিতে পারে পুরুষদের মধ্যে সংক্রমণ প্রস্রাব গ্রন্থি অথবা মূত্রনালীতে ছড়িয়ে পড়তে পারে স্যাঙ্ক্রয়েড হল একটা অত্যন্ত ছোঁয়াচে রোগ যার ফলে যৌনাঙ্গে ঘাএর সৃষ্টি হয় ব্যাক্টেরিয়াম বা রোগজীবাণু হ্যামোফিলাস ডুক্রেয়ি চ্যানক্রয়েড হওয়ার জন্য দায়ী এটি যৌন অথবা অযৌন সংসর্গেও হতে পারে এটা সাধারণত লিঙ্গাগ্রচর্মছেদন না করা পুরুষদের মধ্যে অধিক দেখা যায় চর্মছেদন করানো নারী ও পুরুষদের তুলনায় এবং বিশেষত উন্নয়নশীল দেশে ও যৌন কর্মীদের মধ্যে বেশী দেখা যায় হিউম্যান ইমিউনোডেফিসিয়েন্সি ভাইরাস (HIV) সংক্রমণের জন্য ঝুঁকিপূর্ণ কারণগুলির মধ্যে চ্যানক্রয়েড একটি চ্যানক্রয়েডের উপসর্গগুলি রোগজীবানু দ্বারা আক্রান্ত হবার চার দিনের মধ্যে কদাচিৎ তিন দিনের মধ্যেই প্রকাশ পায় একটি লাল মাংসপিন্ড যা পূঁয দ্বারা পরিপূর্ণ থাকে সংক্রামণ স্থানে স্থানে দেখা দেয় যৌনাঙ্গে অথবা মলদ্বারের আসেপাশে এই মাংসপিন্ডটি এরপর উন্মুক্ত ঘায়ে পরিণত হয় যা ক্ষত স্থানের মতো দেখতে হয় তথাপি ঘাটি দ্গদগে প্রকারের হয়মেয়েদের ক্ষেত্রে এই ঘায়ের কোন উপসর্গ না থাকলেও পুরুষদের ক্ষেত্রে এটি যন্ত্রণাদায়ক হয় পুরুষদের ক্ষেত্রে কুঁচকির লিম্ফ নোডএ ব্যাথা ও ফোলাভাব দেখা যায় সাধারণত শরীরের একপাশেই দেখা যায় কিন্তু কখনও কখনও দুপাশেও দেখা যায় চ্যানক্রয়েড যে যে কারণে হয় চ্যানক্রয়েডের উন্মুক্ত ঘায়ের সাথে সরিসরি ত্বকের সংস্পর্শ চ্যানক্রয়েডে পূঁযের সাথে সরাসরি সংস্পর্শ উচ্চঝুঁকিপূর্ণ ব্যক্তির সাথে যৌন সহবাসযেমন ব্যবসায়িক যৌন কর্মীরা বহু সঙ্গী থাকা চ্যানক্রয়েড আক্রান্ত ব্যক্তির সঙ্গে যোনিপায়ু অথবা মৌখিক যৌন সহবাস চ্যানক্রয়েড সাধারণভাবে ঘা আক্রান্ত স্থানের নমুনা সংগ্রহ করে এবং রক্তের নমুনা সংগ্রহের দ্বারা নির্ণয় করা হয় সংগৃহিত নমুনাগুলি থেকে চ্যানক্রয়েডের কারণ যে ব্যাকটেরিয়া তার উপস্থিতি পরীক্ষা করা হয় চিকিৎসাগত রোগ নির্ণয়ের সঠিক পদক্ষেপগুলি হল যৌনাঙ্গের আলসার বা ঘা আছে কিনা তা জানার জন্য শারীরিক পরীক্ষা লিম্ফ নোডের ফোলাভাবযা চ্যানক্রয়েডে সাধারণভাবে দেখা যায় সিফিলিসের অনুপস্থিতি হার্পিস সিম্পলেক্স ভাইরাস পলিমেরেজ চেন প্রতিক্রিয়া (এইচ এস ভি পি সি আর) পরীক্ষার নেতিবাচক ফলাফল একটি সফল চিকিৎসা উপসর্গগুলির উপশম করে এবং রোগের সংক্রমণ প্রতিরোধ করে অ্যান্টিবায়োটিক থেরাপি দ্বারা এর চিকিৎসা করা হয় যা সংক্রমণকে পুরোপুরি বিতাড়িত করে চিকিৎসক যে চিকিৎসা বিধানটি দেন সেটি সম্পূর্ণ করা উচিত আপনার সঙ্গীরও চিকিৎসার প্রয়োজন হতে পারে সম্পূর্ণ চিকিৎসার জন্য সময়ের প্রয়োজন এবং অলসারের সেরে ওঠা আলসারের বা ঘায়ের আয়তনের উপড় নির্ভর করে এই চিকিৎসা বেশী ভালো ফলাফল দিতে পারে লিঙ্গাগ্রচর্মছেদন করা অথবা এইচআইভিনেগেটিভ ব্যক্তির ক্ষেত্রে তুলনায় লিঙ্গাগ্রচর্মছেদন না করা অথবা এইচআইভি পজিটিভ ব্যক্তির ক্ষেত্রে অতো ভালো ফলাফল নাও হতে পারে মহিলাদের জরায়ুর মুখ যেখানে যোনির সাথে মিলিত হয় তাকে সার্ভিক্স বলা হয় যখন সার্ভিক্স উদ্দীপ্ত হয় তখন তাকে সারভিসাইটিস বলা হয় এর অনেক কারণ আছে এবং উপসর্গগুলি বিভিন্ন মহিলার ক্ষেত্রে বিভিন্নসারভিসাইটিস সংক্রামক বা অ সংক্রামক হতে পারে এবং এটির চিকিৎসা এর কারণের ওপর নির্ভর করে বাইপোলার ডিসঅর্ডার একটি মানসিক স্বাস্থ্য সম্বন্ধীয় অবস্থা যেখানে কোনও ব্যক্তির মেজাজের পরিবর্তন ঘটে চরম আনন্দ এবং বিষন্নতা যেকোন একটিতে একে ম্যানিক ডিপ্রেসনও বলে যাতে ব্যক্তিটির রোজকার জীবন ক্ষতিগ্রস্ত হয় যে ধরণের মেজাজে একজন ব্যক্তির সর্বোচ্চ শক্তিস্তর লক্ষ্য করা যায় তাকে ম্যানিয়া বলেএই রকম মেজাজ থাকাকালীন তারা অত্যধিক আনন্দ ও ইতিবাচকতা দেখায় এমনকি স্বতঃস্ফূর্ত কাজকর্মগুলিতেও যেমন উদারভাবে উপহার দেওয়া বা প্রবল উদ্দীপনা নিয়ে কেনাকাটা করা তারা আবার খিটখিটে হয়ে যেতে পারে এবং হ্যালুসিনেশন বা অমূলক জিনিস প্রত্যক্ষ করতে পারে অথবা অবাস্তব জিনিসে বিশ্বাস করতে পারেঠিক এর উল্টোদিকে আছে অবসাদের মতো মেজাজ যেখানে একজন ব্যক্তি বিষন্ন অনুভব করতে পারে মনমরা এবং সবকিছুতে অনুৎসাহী হতে পারেবিষন্নতার সময়কাল বলতে রোগ সম্পর্কিত বিষন্নতার সময়কালকে বোঝায় যেখানে একজন ব্যক্তি অন্য কারোর সাথে কথা বলতে চায় না বা প্রাত্যহিক কাজকর্মগুলি করতে চায় না এমনকি তাদের মধ্যে আত্মহত্যার চিন্তা এসে যায়এই দুটি মেজাজের মধ্যেই একজন বাইপোলার ডিসঅর্ডারের রোগীর স্বাভাবিক ব্যবহার করার অবস্থাও থাকে যদিও কোনও নির্দিষ্ট ধরণ নেই এবং প্রতিটা অবস্থা কয়েক সপ্তাহ থেকে কয়েক মাস পর্যন্ত হতে পারে বাইপোলার ডিসঅর্ডারের কারণগুলি জানা নেই এর উপর প্রচুর গবেষণা চলছে কিন্তু শুধু ঝুঁকির কারণগুলিই এখন পর্যন্ত জানা সম্ভব হয়েছেমস্তিষ্কের গঠনগত কারণকে এই অবস্থা সৃষ্টির জন্য দায়ী করা হয় যদি রোগীর বাবামা বা দাদুঠাকুমার বাইপোলার ডিসঅর্ডার থাকে তাদের সন্তানদেরও এই রোগ হবার উচ্চসম্ভাবনা থেকে যায়অন্যান্য যে কারণগুলি বাইপোলার ডিসঅর্ডারের জন্য দায়ী সেগুলি হল খুব বেশি মানসিক চাপ মানসিক আঘাত অথবা শারীরিক কোনও অসুস্থতা থেকেও হতে পারে কিভাবে এর রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা করা হয়বাইপোলার ডিসঅর্ডারের ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় করা কঠিন কারণ এর কোনও শারীরিক উপসর্গ নেই এবং যেহেতু ভিন্ন ব্যক্তির মেজাজ ভিন্ন ভিন্ন প্রকারের হয়মানসিক রোগের চিকিৎসক বিভিন্ন রকমের ক্রিয়াকলাপ ও কাজের মাধ্যমে একজন ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্য সম্পূর্ণ পরীক্ষা করে দেখেন চিকিৎসার ক্ষেত্রে রোগীর প্রাত্যহিক ভাবে লিখে রাখা মেজাজ সম্পর্কিত দিনলিপিও যথেষ্ট সাহায্য করে কিছু মানসিক স্বাস্থ্য সম্পর্কিত পরীক্ষা আছে যার মাধ্যমে মানসিক অবস্থার উপসর্গগুলি বিচার করে বাইপোলার ডিসঅর্ডার রয়েছে কিনা বোঝা যায় ডাক্তার অন্যান্য অসুখের সম্ভাবনা সম্বন্ধে পরিষ্কার হয়ে নেওয়ার জন্য এর সাথেই কিছু শারীরিক পরীক্ষা এবং কিছু রকমের রক্ত পরীক্ষা করেনবাইপোলার ডিসঅর্ডারের চিকিৎসায় মেজাজ পরিমার্জনা করার জন্য ওষুধ থেরাপি জীবনশৈলীতে সংশোধন প্রভৃতি ব্যবস্থা নেওয়া হয়বিষন্নতাদূরকারী ও মনোরোগদূরকারী ওষুধ দেওয়া হয় থেরাপি হিসেবে আন্তঃব্যক্তিগত থেরাপি যেখানে প্রাত্যহিক কাজকর্মগুলি যেমন ঘুমানো খাওয়া প্রভৃতির উপর নিয়ন্ত্রণ পাওয়ার চেষ্টা করা হয় জ্ঞান সম্বন্ধীয় যে থেরাপি করা হয় তাতে একজন মানসিক রোগের চিকিৎসক রোগীকে তার আচরণ নিয়ন্ত্রনের জন্য তার চিন্তাধারায় পরিবর্তন আনতে বলেনঅন্যান্য নিজের যত্ন নেওয়ার পদ্ধতিগুলি হল নিজের কোনও প্রিয়জনের কাছ থেকে সহযোগিতা চাওয়া প্রাত্যহিকভাবে নির্দিষ্ট নিত্যকর্মসূচি মেনে চলা মেজাজ বদল যখন হয় তা বুঝে বিশেষজ্ঞের সাহায্য দ্বারা তার উপর নিয়ন্ত্রণ করার চেষ্টা করতে হবে বিঞ্জ ইটিং ডিসঅর্ডার (বিইডি) হল খুবই জটিল অবস্থায় পৌঁছাতে পারে অথচ একদমই গুরুত্ব দেওয়া হয় না এমন ধীরে ধীরে বাড়তে থাকা অনিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভাস যার ফলস্বরূপ অপরাধবোধের মতো মানসিক প্রতিক্রিয়াও দেখা যায়এটা প্রাপ্তবয়স্ক যুবকযুবতীদের মধ্যে সাধারণভাবে দেখা যায় এমন একটি রোগ এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তি অল্প সময়ের ব্যবধানে সাধারণের চেয়ে বেশি পরিমাণ খাবার খেয়ে থাকে যার ফলস্বরূপ বেশি খাওয়ার জন্য তারা মানসিক চাপ অনুভব করে নিজেদের উপর অপরাধ রাগ অনুভব করেঅন্যান্য উপসর্গগুলি হলযতক্ষণ না অস্বস্তি অনুভব করছে ততক্ষণ খেয়ে যাওয়া খুব তাড়াতাড়ি খাওয়া অন্যদের সাথে বসে খাবার খেতে লজ্জাবোধ এবং নিজের খাবার পরিমাণ সম্বন্ধে অন্যদের জানতে দিতে লজ্জাবোধ মানসিক চাপএর সময় উদ্বেগএর সময় রাগের সময় খাওয়া আবার পরে অপরাধ বোধ করাএই প্রবণতা ছেলেদের থেকে মেয়েদের মধ্যে বেশি দেখা যায় এবং কুড়ি থেকে তিরিশ বছর বয়েসের মানুষজন বেশি আক্রান্ত হন যেহেতু বিঞ্জ ইটিং আচরণগত ও মানসিক কারণে ঘটে থাকে সেহেতু আসল কারণগুলি জানা যায়নি কিন্তু ঝুঁকির বিষয়গুলিকে চিহ্নিত করা গেছেস্থুলতার সাথে বিঞ্জ ইটিং বিশেষভাবে যুক্ত যেহেতু 30 ক্ষেত্রে বিইডি আক্রান্তরা স্থুলকায় হন এই বিষয়টি চক্রাকারে ঘটতে থাকে যেহেতু অতিরিক্ত ওজন এই রোগটির কারণ আবার ফলও জিনগত কারণ গবেষকরা বলছেন যাদের মস্তিষ্কে ডোপামিনের স্তর বেশি থাকে তাদের বিঞ্জ ইটিংয়ের সমস্যা থাকবে কারণ তারা ডোপামিনের প্রভাবে অধিক সংবেদনশীল হয় এবং আনন্দ অনুভূতি ও পুরস্কার পাওয়ার ইচ্ছা তাদের মধ্যে বেশি থাকেমানসিক কারণগুলো যেমন মানসিক চাপ বিষন্নতা একাকীত্ব এবং আত্মসম্মানবোধের বিষয়গুলিও বিশেষভাবে দায়ী হয় যাতে কেউ নিজেকে ভালো রাখার জন্য খাওয়ার দিকে বেশি করে ঝুঁকে পড়ে বিইডির ক্ষেত্রে রোগ নির্ণয় একমাত্র তখনই সম্ভব যখন রোগী নিজে স্বীকার করে যে তাঁর সমস্যা রয়েছেএকজনের আচরণের উপর নির্ভর করে ও সে কি কি অস্বস্তিকর পরিস্থিতির সম্মুখীন হয় তার দ্বারা ডাক্তার রোগ নির্ণয় করতে পারবেন একজনের খাদ্য তালিকার ধরণ খাদ্যাভাস ও শরীরের ওজন থেকেও অবস্থা বিচার করা যায়বিঞ্জ ইটিং ডিসঅর্ডারের চিকিৎসা মানসিক থেরাপি কাউন্সেলিং ওজন কমানোর ব্যায়াম এবং ওষুধের মাধ্যমে করা হয়জ্ঞান সম্বন্ধনীয় আচরণগত থেরাপি দ্বারা একজন বিশেষজ্ঞ কি কি কারণে ব্যক্তিটি বিঞ্জ ইটিং করছে তা জানতে পারেন তার মানে কি কি কারণে মানসিক চাপ অনুভূত হচ্ছে উদ্বেগ বা রাগ হচ্ছে তা জানা যদি বিঞ্জ ইটিং কোনো বিশেষ অবস্থার কারণে হয়ে থাকে তাহলে কাউন্সিলিং দ্বারা সেই অবস্থাটির সম্মুখীন হওয়ার চেষ্টা করতে হবে ওজন কমানোর থেরাপি দ্বারা একজন ব্যক্তির আত্মসম্মান বোধ বা কেমন দেখাচ্ছে তাকে এই বিষয়গুলির নিষ্পত্তি সম্ভব এই থেরাপিগুলির সাথে সাথে একজন রোগীকে বিষন্নতারোধী ওষুধ দেওয়া হয় যাতে তার মানসিক স্বাস্থ্য উন্নত হয় একটা নির্দিষ্ট খাওয়ার ধরণ ও উন্নত খাদ্য তালিকা গঠনও কার্যকরী হতে পারে ভ্যাজাইনাল মাইক্রোফ্লোরা হল দরকারী এবং ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়ার একটি মিশ্রণ বিভি হল যোনির একটি সংক্রমণ যা ক্ষতিকারক ব্যাকটেরিয়া যখন ভালো ব্যাকটেরিয়া ওপর প্রভাব বিস্তার করে তখন হয়ব্যাকটেরিয়াগুলির মধ্যে ভারসাম্যের অভাবের জন্য যোনি এলাকায় একটি প্রদাহ হয় এই অবস্থার শিকার হওয়া প্রায় অর্ধেক মহিলারই কোনও উপসর্গ দেখা যায় না কিছু মহিলাদের মধ্যে উপসর্গগুলি বারবার দেখা যায় এবং উধাও হয়ে যায় ঔপসর্গিক মহিলাদের মধ্যে যে সাধারণ লক্ষণগুলো দেখা যায় সেগুলো হলপ্রস্রাবের সময় জ্বলন অনুভব যোনি থেকে অপ্রীতিকর 'আঁশটে' গন্ধ সাদাটে বা ধূসর যোনির স্রাব যোনিতে সবচেয়ে সাধারণ ধরনের ব্যাকটেরিয়া হল গার্ডনেরেল্লা এই ব্যাকটেরিয়া অধিকাংশ ক্ষেত্রে বিভি হওয়ার জন্য দায়ী ল্যাকটোব্যাসিলি হল একটি ব্যাকটেরিয়া যা যোনির পরিবেশকে স্বাস্থ্যকর রাখে ল্যাকটোব্যাসিলাসের সংখ্যা কমলেও ভ্যাজাইনোসিস হতে পারেএই সংক্রমণের সাথে সম্পর্কিত কিছু ঝুঁকির বিষয় হলধূমপান একাধিক সঙ্গীর সঙ্গে যৌনসম্পর্ক ডাউচিং যদি ইন্ট্রাইউটেরাইন ডিভাইসগুলি (আইইউডিএস) বিভি র ঝুঁকি বাড়ায় তা প্রমাণ করার জন্য পর্যাপ্ত প্রমাণ নেই একজন স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ আপনার উপসর্গ এবং যোনির পরীক্ষা উপর ভিত্তি করে বিভি নির্ণয় করতে পারেন ব্যাকটেরিয়া নিয়ন্ত্রণ করতে মাইক্রোস্কোপিকভাবে স্রাব পরীক্ষা করা হয় এই তদন্তটি অন্য কোন ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ বা গনোরিয়া মতো যৌন সংক্রামিত রোগ (এসটিডি) আছে কিনা তা জানতে সাহায্য করে বিভি কে প্রায়ই ইস্ট সংক্রমণ ভেবে ভুল করা হয় সেটি হলে স্রাব অনেক ঘন এবং গন্ধ ছাড়া হয়বিভি এর চিকিৎসা উপসর্গগুলির উপর নির্ভর করে হয়যে মহিলাদের উপসর্গগুলি নেই তাদের চিকিৎসার প্রয়োজন নেই যেসব মহিলাদের যোনিতে চুলকানি অস্বস্তি বা স্রাব হয় তাদের সংক্রমণ সারাতে এন্টিবায়োটিক দিয়ে চিকিৎসা করা হয় ট্যাবলেট এবং টপিকাল ক্রিম দিয়ে ওষুধগুলি গঠিত যা প্রায় 68 দিন ধরে দিতে হয় যদি সংক্রমণটির পুনরাবৃত্তি হয় এন্টিবায়োটিকের কোর্সটি বাড়াতে হবে বারংবার হওয়া প্রতিরোধ করতে এটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ যে প্রতিটি রোগীকে সম্পূর্ণ সময়ের জন্য নির্ধারিত ওষুধ নিতে হবেবারংবার হওয়া প্রতিরোধ করার জন্য নিজের প্রতি নেওয়া যত্নের পদক্ষেপগুলি হলনিয়মিত এসটিডির পরীক্ষা করুন এবং একাধিক সঙ্গীর সাথে যৌনতা এড়ান ডুশ দেবেন না জল দিয়ে পরিষ্কার করা আবশ্যক যোনির এলাকা পরিষ্কার করতে হালকা সুগন্ধি ছাড়া সাবান ব্যবহার করুন(আরও পড়ুন যোনির আরোগ্য) জীবনের যে পর্যায়ে এসে কোন ব্যক্তি মদের প্রতি আসক্ত বা নির্ভরশীল হয়ে পড়ে সেই অবস্থাকে মদে নেশাগ্রস্ত হওয়ার রোগ বা অ্যালকোহলিক বলে এই সব ব্যক্তিরা আনন্দ উপভোগের জন্য কম বরং প্রয়োজনীয়তা থেকে বা নির্ভরশীলতার কারণে বেশী মদ্যপান করেন যারা নেশাগ্রস্ত হওয়ার রোগে ভোগেন তাঁরা মদ্যপানের খারাপ প্রভাবগুলি বুঝতে পারেন কিন্তু নিজেদের মদ্যপান থেকে বিরত করতে পারেন না মদে নেশাগ্রস্ত কোন ব্যক্তির কর্ম ও তার পেশাগত জীবন আর্থিক স্থায়িত্ব এবং সম্পর্কও ক্ষতিগ্রস্ত হয় নিয়মিত মাসিক ধর্ম বা পিরিয়ডসের বাইরে যদি কোন ধরনের জরায়ুর রক্তপাত ঘটে যেখানে স্পটিং (ছোপ ধরা) বা রক্তপাত হয় বার বার মাসিক হওয়ার অভিজ্ঞতা মাসিক চক্রের সময় বেশি রক্তের প্রবাহ এবং দীর্ঘ সময় ধরে রক্তপাতকে জরায়ুর অস্বাভাবিক রক্তপাত হিসেবে গণ্য করা হয়যেহেতু সব মহিলাদের মাসিকের সময় নির্ধারিত তারিখে আসে না তাই 2 টি মাসিকের মধ্যে 21 এবং 35 দিনের একটি সীমা হল অনুমোদনযোগ্য যদি এটা অতিক্রম করে যায় বা খুব শীঘ্র হয়ে যায় তাহলে এই রক্তপাতের কারণগুলি জানার জন্য একটি পরীক্ষার প্রয়োজন হতে পারে যদিও চিকিৎসকেরা মাসিকের সময় নির্দিষ্ট তারিখ থেকে কিছুটা সরে গেলে মহিলাদের অস্বাভাবিকতার নির্দেশ দেন তাও আরো কিছু নির্ধারিত লক্ষণ আছে যা জরায়ুর অস্বাভাবিক রক্তপাতকে নির্দেশ করে সেগুলি হলএমন একটি মাসিক বা পিরিয়ড যা 3 সপ্তাহের মধ্যে একবারের তুলনায় বেশি বার হয় বা আবার হতে 5 সপ্তাহেরও বেশি সময় নেয় একটি মাসিক যেটা একসপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলে বা 2 দিনের মধ্যে শেষ হয়ে যায় এক ঘন্টায় একবারের তুলনায় বেশিবার ট্যাম্পুন বা প্যাড বদলানো সহবাস বা যৌনসম্পর্কের পরে বা মাসিকের মধ্যে রক্তপাত বা স্পটিং (ছোপ পরা) এই অবস্থাটির জন্য সবচেয়ে সাধারন কারণটি হল হরমোনগুলির মধ্যে একটি ভারসাম্যহীনতা এছাড়া অন্যান্য কারণগুলি হলজন্ম নিয়ন্ত্রণের ওষুধ অবসাদ এবং উদ্বেগ বর্ধিত ওজন বৃদ্ধি বা ওজন হ্রাস একটি আইইউডি জরায়ুতে ফাইব্রয়েডের উপস্থিতি রক্ত পাতলা করার ওষুধ সারভাইকাল ক্যান্সার বা ইউটেরাইন ক্যান্সার থাইরয়েড বা কিডনির অসুস্থতা সারভিক্স বা জরায়ুতে সংক্রমণ তাৎক্ষণিকভাবে হয়ত রোগটি নির্ণয় সম্ভব নয় কারণ চিকিৎসক শারীরিক পরীক্ষা করবেন এবং পরবর্তী চক্র এবং মাসিককে নিরীক্ষণ করারও সিদ্ধান্ত নিতে পারেন একটি গর্ভাবস্থার পরীক্ষা এবং চিকিৎসার ইতিহাস হল প্রাথমিকভাবে রোগ নির্ণয় করার অপর পদক্ষেপ এরপর হরমোনের ভারসাম্যহীনতা লৌহ বা আয়রনের অভাব বা রক্ত সম্পর্কিত রোগের জন্য রক্ত পরীক্ষা করা হয় চিকিৎসক গর্ভাশয় পরীক্ষা করার জন্য একটি আল্ট্রাসাউন্ড করবেন বা গর্ভাশয় গ্রীবা বা সারভিক্সের পরীক্ষা করার জন্য হিস্টারোস্কোপি করবেন যদি ক্যান্সার বা অন্য কোনো রোগ সম্পর্কে সন্দেহ থাকে তাহলে বায়োপসি করা যেতে পারেডায়াগনোসিস বা রোগ নির্ণয় কি নির্দেশ করছে তার উপর নির্ভর করে এই সমস্যাটির মোকাবিলা করার জন্য এবং দ্রুত আরাম দেওয়ার জন্য চিকিৎসার একটি কোর্স বা পদ্ধতি বেছে নেওয়া হয় চিকিৎসার কিছু পদ্ধতি হলপিরিয়ড বা মাসিক নিয়মিত করার জন্য এবং রক্তপাতকে স্বাভাবিক করার জন্য হরমোনের ওষুধ যার মধ্যে জন্ম নিয়ন্ত্রণের ওষুধ গোনাডোট্রপিন রিলিজিং হরমোন অ্যাগোনিস্ট অন্তর্ভুক্ত রয়েছে (আরো পড়ুন অনিয়মিত মাসিকের চিকিৎসা) রক্তপ্রবাহ কম করার জন্য অ্যান্টিইনফ্লেম্যাটরি বা প্রদাহ কমানোর ওষুধ রক্ত জমাট বাধা এবং রক্তপাত কম করতে ট্রানেক্সামিক অ্যাসিড এন্ডোমেট্রিয়াল বিমোচন যা জরায়ুর আস্তরণ ধ্বংস করে দেয় তবে কার্যত পরে মাসিক বন্ধ করে দেয় মায়োমেক্টমি যা ফাইব্রয়েডগুলিকে সরিয়ে দেয় বা তাদের মধ্যে রক্ত সরবরাহ বন্ধ করে দেয় বড় ফাইব্রয়েড বা জরায়ুর ক্যান্সারের জন্য হিস্টারেক্টমি মেনোপজ এমন একটি সমস্যা যা পৃথিবীর অর্ধেক মানুয়ের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলে থাকে আর এর পরোক্ষ প্রভাব পড়ে সবার জীবনে অনেক মহিলাই তাদের বয়স ৪০ বা ৫০এর কোঠায় পৌঁছানোর পরই এ নিয়ে ভাবতে শুরু করেন কিন্তু তার আগেও মেনোপজ ঘটতে পারে যুক্তরাজ্যে প্রতি ১০০ জন নারীর অন্তত একজনের ৪০ বছরের আগেই মেনোপজ হয়ে থাকে তবে এর প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারে মেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হযে যাওয়াকেই বলে মেনোপজ যা সাধারণত ৫০ বছর বয়সের দিকে ঘটে থাকে মাসিক পুরোপুরি বন্ধ হবার আগের সময়টাকে বলে পেরিমেনোপজ যখন তাদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে যায় কখনো খুব বেশি স্রাব হয় এমন কিছু লক্ষণ দেখা দেয় যা আগে ঘটেনি একনাগাড়ে ১২ মাস মাসিক না হলে একজন নারী পোস্টমেনোপজ স্তরে পৌঁছেছেন বলে ধরা হয় এটা ৪০ বছরের আগে ঘটলে বলা হয় প্রাইমারি ওভেরিয়ান ইনসাফিশিয়েন্সি অনেকের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি অস্ত্রোপচার বা অন্য কোন চিকিৎসার জন্যও কম বয়সে মেনোপজ হতে পারে যুক্তরাজ্যে প্রতি ১০০ জন নারীর অন্তত একজনের ক্ষেত্রে ৪০ বছরের আগেই মেনোপজ হয়ে থাকে তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারে স্বাভাবিক সময়ের আগে মেনোপজ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি দরকার বাংলাদেশের দূষণপ্রবণ এলাকাগুলোর প্রায় ১৪ শতাংশ বাসিন্দা বিষণ্ণতায় ভুগছেন বলে বিশ্ব ব্যাংকের গবেষণায় উঠে এসেছে যা কম দূষণ আক্রান্ত এলাকার চাইতে বেশি গবেষণাটিতে বিভিন্ন প্রশ্নের মাধ্যমে মানসিক স্বাস্থ্য পরিস্থিতি পরিমাপ করা হয় তবে বায়ু দূষণের এই দীর্ঘমেয়াদী শারীরিক ও মানসিক প্রভাবের বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে এরইু মধ্যে বিভিন্ন উদ্যোগ নেয়ার কথা জানিয়েছে বাংলাদেশের স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগ এই দীর্ঘ সময়ে ভয়াবহ বায়ু দূষণের মধ্যে থাকার কারণে তার মনমেজাজে খারাপ প্রভাব পড়ে ঢাকা শহরে রাস্তায় নামলে মাঝে মাঝে মনে হয় গাড়ি চালকেরা যেন হর্ন বাজানোর প্রতিযোগিতায় নেমেছেন কোন কিছু সামনে পড়ে গেলেই কানফাটা শব্দে বেজে উঠছে হর্ন এক সেকেন্ডও যেন অপেক্ষা করতে রাজি নন চালকেরা শুধু গাড়ির হর্ন নয় এই শহরে নির্মাণ কাজ গ্রিল টাইলস কাটা মেশিনে ইট ভাঙা মাইক বাজানো জেনারেটরের শব্দে কান ঝালাপালা অবস্থা সেই ভোর থেকে মধ্যরাত পর্যন্ত চলে শব্দের তাণ্ডব দিনকে দিন ঢাকার শব্দ যেন আরও জোরালো হয়ে উঠছে এসব কারণে শব্দ দূষণে বিশ্বের শীর্ষস্থানে জায়গা করে নিয়েছে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা ফেব্রুয়ারি মাসে জাতিসংঘ পরিবেশ কর্মসূচি ইউএনইপির প্রকাশ করা এক বৈশ্বিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য উঠে এসেছে এতদিন পর্যন্ত ঢাকায় শব্দ দূষণ রোধে যেসব প্রচারণা চালানো হয়েছে তাতে শ্রবণশক্তি ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার কথাই বেশি বলা হয়েছে কিন্তু মানুষের কানের যতটুকু সহ্য ক্ষমতা তার চেয়ে অতিরিক্ত শব্দের মধ্যে দীর্ঘমেয়াদি বসবাস শরীরের অনেক গুরুতর অসুখের কারণ যৌন সঙ্গী যদি আক্রান্ত থাকেন তাহলে তার যৌনাঙ্গের তরল পদার্থ এবং মুখের লালায় উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া ও ভাইরাস আপনার শরীরে প্রবেশ করতে পারে বাংলাদেশে এক সময় সবচেয়ে বেশি পাওয়া যেত গনোরিয়া এবং সিফিলিস তবে ইদানীং ভাইরাসজনিত যৌন রোগই সবচেয়ে বেশি পাওয়া যাচ্ছে যেমন ইদানীং আমরা হারপিস অনেক পাচ্ছি মূলত সাতটি যৌন রোগ সবচেয়ে বেশি পাওয়া যায় গনোরিয়া সিফিলিস জেনিটাল হারপিস ছাড়াও ক্লামাইডিয়া যৌনাঙ্গে আঁচিল ট্রাইকোমোনিয়াসিস হেপাটাইটিস বি এর মধ্যে অন্যতম যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সেবা সংস্থা এনএইচএস বলছে গর্ভাবস্থায় কোন নারীর সিফিলিস থাকলে রোগটি সন্তানের শরীরে প্রবেশ করতে পারে আক্রান্ত ব্যক্তির রক্ত নিলেও এটি হতে পারে বাইপোলার মানে হচ্ছে দুই মেরু অর্থাৎ একজন ব্যক্তির মানসিকতার এক প্রান্তে থাকে উৎফুল্লতা অতিরিক্ত উচ্ছ্বাস প্রবণতা যাকে চিকিৎসকরা বলেন ম্যানিয়া এপিসোড রোগী অতিরিক্ত উৎফুল্ল থাকেন কথা বেশি বলেন অনেক সময় জিনিসপত্র বিলিয়ে দেন আরেকপ্রান্তে থাকে বিষণ্ণতা যাকে চিকিৎসকরা বলেন ডিপ্রেশন এপিসোড এই সময় তার কিছুই ভালো লাগে না হতাশায় ভোগেন দুঃখ বোধ প্রবল থাকে অনেকের মধ্যে আত্মহত্যার প্রবণতাও দেখা যায় এই দুইয়ের মাঝামাঝি সময়ে রোগী ভালো থাকেন সেই সময় অন্য সব মানুষের মতোই স্বাভাবিক আচরণ করেন একেকটি এপিসোড (ম্যানিয়া অথবা ডিপ্রেশন) কখনো কখনো কয়েকদিন কয়েক সপ্তাহ বা কয়েক মাস ধরেও চলতে পারে বাইপোলার ডিসঅর্ডার ঠিক কোন কারণে হয় তা এখনো পরিষ্কার নয় তবে এর পেছনে কয়েকটি উপাদান কাজ করে থাকতে পারে বলে বিজ্ঞানীরা ধারণা করেন যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সেবা বিভাগের তথ্য অনুযায়ী প্রতি ১০০ জন মানুষের মধ্যে অন্তত একজন জীবনের কোন একটি পর্যায়ে বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগে থাকেন অনেক সময় জেনেটিক্যালি বা বংশগত কারণে বাইপোলার রোগটি পরবর্তী প্রজন্মের মধ্যে চলে আসে বিশেষত মস্তিষ্কে সেরোটোনিন ডোপামিন নরঅ্যাড্রেনালিন ইত্যাদি নিউরোট্রান্সমিটারের ভারসাম্যহীনতা স্বায়ুবিকাশজনিত সমস্যা মানসিক রোগের ভুল চিকিৎসা ইত্যাদি কারণে বাইপোলার হতে পারে সাধারণত তরুণ বয়সে এই রোগের প্রকাশ দেখা যায় নারী ও পুরুষউভয়েরই এই রোগটি হতে পারে একজন থেকে আরেকজনের সাথে লক্ষণের পার্থক্য থাকতে পারে বাংলাদেশে প্রতি হাজারে চারজন বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার একটি জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশে গবেষণায় অংশ নেয়া প্রতি ১০০০ জন মানুষের মধ্যে চারজন বাইপোলার মুড ডিসঅর্ডারে ভুগছেন ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরিজীবী একজন তরুণী বিশ্ববিদ্যালয় জীবন থেকেই বাইপোলার রোগে ভুগতে শুরু করেছিলেনসেই সময় তিনি দিনের পর দিন ঘরের দরজা বন্ধ করে থাকতেন কয়েক সপ্তাহ ধরে ঘরের বাইরে বের হতেন না পরিবারের সদস্য আত্মীয়স্বজন কারও সঙ্গে কথা বলতেন না ঠিকমতো খাবার খেতেও ইচ্ছা করতো না আবার কিছুদিন পরেই সেই একই মানুষ একেবারে উল্টো আচরণ করতে শুরু করতেন তখন বাসায় পার্টি করা বন্ধুদের সাথে ঘুরতে যাওয়া শুরু হয় ইচ্ছামতো দরকারিঅদরকারি জিনিসপত্র কিনতে শুরু করেন রাতে ঘুমাতেন না টাকা পয়সার খরচে কোন হিসাব থাকতো না নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এই তরুণী বিবিসি বাংলাকে বলছেন ''পরিবারের সদস্যরা প্রথমে ভেবেছিলেন আমি কোন মাদকে আসক্ত হয়ে পড়েছি কিনা সেটা হয়নি বোঝার পর তারা আমাকে মানসিক চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যান তখন চিকিৎসক জানালেন আমি বাইপোলারে আক্রান্ত'' সেই সময় থেকেই তিনি নিয়মিত ওষুধ এবং চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে রয়েছেন পড়াশোনা শেষ করার পর এখন একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ শুরু করেছেন এই তরুণী ''এখনো মাঝে মাঝে মুড চেঞ্জ হয় আমি টের পাই মন খারাপ হয় বা অযথা কেনাকাটা করতে ইচ্ছা করে কিন্তু এখন নিজেকে খানিকটা নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তারপরও এমন সব আচরণ করে ফেলি যা হয়তো করতে চাই পরে অনুশোচনা হয়'' তিনি বলছিলেন আচরণ পরিবর্তনের কারণে কর্মক্ষেত্রে বা পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে অনেক সময় তার সম্পর্কে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে বলেও তিনি জানান বাইপোলারে আক্রান্ত ব্যক্তিরা যেহেতু দুই ধরনের মুড বা আচরণ প্রকাশ করেন তাই এর লক্ষণও দুই প্রকার বলা যায় একই ব্যক্তির মধ্যে সময়ের ব্যবধানে এরকম পরস্পর বিপরীত আচরণ দেখা গেলে মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া উচিত ম্যানিয়া এপিসোড অতিরিক্ত আবেগপ্রবণ অতি উৎফুল্ল মনোভাব অতিরিক্ত কথা বলা নিজেকে বিশাল শক্তিশালী বড় কেউ ক্ষমতাশালী মনে করতে শুরু করা হাই এনার্জি বা অতিরিক্ত কাজের প্রবণতা খাবারে অনীহা অযৌক্তিক কথা বা দাবি করা চিন্তাভাবনা করা বাড়তি উচ্ছ্বাস প্রবণতা নিদ্রাহীনতা ঘুম এলেও ঘুমাতে না চাওয়া হঠাৎ রেগে যাওয়া ঝগড়াঝাঁটি বা মারামারি করা বেপরোয়া মনোভাব বেশি বেশি খরচ করতে শুরু করা অদরকারি জিনিসপত্র কিনতে চাওয়া মনোযোগ হারিয়ে ফেলা যৌনস্পৃহা বেড়ে যাওয়া নিজের জিনিসপত্র অন্যদের বিলিয়ে দেয়া ডিপ্রেশন ডিজঅর্ডার ম্যানিয়া ডিসঅর্ডারের ঠিক বিপরীত হচ্ছে ডিপ্রেশন ডিসঅর্ডার একই ব্যক্তি পরস্পর বিপরীতমুখী এধরনের মানসিক পরিবর্তনে ভোগেন বলেই বাইপোলার ডিসঅর্ডার বলা হয় দীর্ঘসময় বা দীর্ঘদিন ধরে বিষণ্ণতায় ভুগতে থাকা হতাশায় ভোগা বিনা কারণে কান্নাকাটি করা উদ্বিগ্ন হয়ে ওঠা আত্মবিশ্বাস কমে যাওয়া সিদ্ধান্তহীনতায় ভোগা নিজেকে ক্ষুদ্র তুচ্ছ বলে মনে করা আত্মহত্যার প্রবণতা জীবন সম্পর্কে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা মরে যেতে চাওয়া কোন ঘটনাতেই আনন্দ বা খুশী হতে না পারা খাবারের আগ্রহ হারিয়ে ফেলা বা অতিরিক্ত খাবার খাওয়া অতিরিক্ত ক্লান্তিবোধ কাজে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা অপরাধ বোধ নিজেকে দোষী ভাবা যৌনস্পৃহা কমে যাওয়া স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া মনোযোগ হারিয়ে ফেলা খুব ভোরে ঘুম ভেঙ্গে যাওয়া অধ্যাপক ডা মেখলা সরকার বলছেন ''যখন কেউ বাইপোলার মুডে ভুগতে থাকেন তখন নিজেকেই সঠিক বলে মনে করেন হয়তো পরবর্তীতে তার অনুশোচনা হয় কিন্তু সেই সময় অন্যদের সম্পর্কে তিনি ভাবতে থাকেন যে তারা তাকে বুঝতে পারছে না সহায়তা করছে না'' কারও কারও ক্ষেত্রে আচরণের এই পরিবর্তন দ্রুত হয় কারও কারও ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় পরে হতে পারে বিষণ্ণতার সঙ্গে বাইপোলারের একটি বড় পার্থক্য হচ্ছে এই রোগে আক্রান্ত ব্যক্তিরা একটা সময় বিষণ্ণতায় ভুগলেও আরেকটা সময় ঠিক বিপরীত আচরণ করেন সাধারণত দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে বিষন্নতা বা অতিরিক্ত উচ্ছ্বাসে ভুগলে তখন বাইপোলার ডিসঅর্ডারে ভুগছেন বলে ধারণা করা যেতে পারে কারও মধ্যে বাইপোলার ডিসঅর্ডারের লক্ষণ দেখা গেলে মানসিক চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে চিকিৎসকের দেয়া ওষুধ এবং পরিবারের সদস্যদের তত্ত্বাবধানে থাকলে এই রোগটি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব কারও মধ্যে বাইপোলার ডিসঅর্ডার বা যেকোন মানসিক রোগ দেখা গেলে অবশ্যই স্বজনদের উচিত তার সঙ্গে সতর্ক আচরণ করা বিশেষ করে তার সঙ্গে সরাসরি কোন তর্ক না করা জোরাজুরি করা উচিত নয় সারা বিশ্বেই পুরুষদের বীর্যে শুক্রাণুর মান কমে যাচ্ছে কিন্তু দম্পতিদের সন্তান না হবার পেছনে এটি এমন একটি কারণ যা নিয়ে আলোচনা হয় খুবই কম তবে পুরুষদের এ সমস্যা ঠিক কেন হয় – তা এখন বিজ্ঞানীরা চিহ্নিত করতে শুরু করেছেন দম্পতিদের সন্তান না হওয়ার যত ঘটনা ঘটে – তার প্রায় অর্ধেকই ঘটে পুরুষের অনুর্বরতার কারণে কিন্তু নারীদের অনুর্বরতা নিয়ে যত আলোচনা হয় তার তুলনায় পুরুষদের অনুর্বরতা নিয়ে আলোচনা হয় খুবই কম এর একটা কারণ হলো এ সমস্যাটিকে ঘিরে নানারকম সামাজিক ও সাংস্কৃতিক প্রশ্ন আছে – যেন এটা নিয়ে কথা বলাই বারণ যেসব পুরুষদের উর্বরতার সমস্যা আছে তাদের অধিকাংশের ক্ষেত্রেই এর কারণ কি তার কোন ব্যাখ্যা পাওয়া যায় না তার ওপর যেহেতু পুরুষদের অনুর্বরতা নিয়ে সমাজে নেতিবাচক ধারণা আছে তাই অনেককে এ জন্য এক নিরব মানসিক যন্ত্রণায় ভুগতে হয় বিভিন্ন গবেষণায় দেখা যাচ্ছে যে এ সমস্যা সম্ভবত বাড়ছে এতে দেখা যায় দূষণসহ বিভিন্ন কারণ পুরুষের উর্বরতার ওপর প্রভাব ফেলে বিশেষ করে বিরূপ প্রতিক্রিয়া হয় বীর্যে শুক্রাণুর মানের ওপর স্বভাবতই ব্যক্তি স্তরে এবং পুরো সমাজের জন্যই এর পরিণাম অত্যন্ত ব্যাপক গত এক শতাব্দীতে সারা বিশ্বে জনসংখ্যা নাটকীয়ভাবে বেড়েছে মাত্র ৭০ বছর আগেও পৃথিবীর জনসংখ্যা ছিল ২৫০ কোটি কিন্তু ২০২২ সালে পৃথিবীতে মানুষের সংখ্যা বেড়ে হয়েছে ৮০০ কোটি তবে জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার এখন কমে আসছে – যার পেছনে প্রধান কারণগুলো সামাজিক ও অর্থনৈতিক সারা বিশ্ব জুড়ে শিশু জন্মের হার রেকর্ড পরিমাণ কমে গেছে পৃথিবীর ৫০ শতাংশ মানুষই এখন এমন দেশগুলোতে বাস করে যেখানে উর্বরতার হার নারীপ্রতি দুটি শিশুরও নিচে এর ফলে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর সংখ্যাই এক সময় কমে আসবে – যদি অভিবাসন না হয় জন্মহার কমার কিছু কারণ আছে যা ইতিবাচক যেমন নারীদের অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর নিয়ন্ত্রণ এখন অনেক বেড়েছে অন্যদিকে নিম্ন উর্বরতার হারের কিছু দেশ আছে যেগুলোতে অনেক দম্পতিই তাদের যতগুলো সন্তান আছে তার চেয়ে বেশি নিতে চান কিন্তু সামাজিক ও অর্থনৈতিক কারণে পারেন না এরই পাশাপাশি দেখা যাচ্ছে আরো কতগুলো কারণ একজন ব্যক্তির সন্তান জন্মদানের শারীরিক সক্ষমতাকে বলা হয় ফিকান্ডিটি – যাকে বলা যায় উর্বরতাকে একটা ভিন্ন মাপকাঠিতে দেখা এখন মনে করা হচ্ছে যে এই ফিকান্ডিটির হার বর্তমানে হয়তো কমে যাচ্ছে কিছু গবেষণায় আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে বিশেষ করে পুরুষদের মধ্যে প্রজননসংক্রান্ত সমস্যার পরিমাণ বেড়ে যাচ্ছে এর মধ্যে আছে বীর্যে শুক্রাণুর সংখ্যা কমে যাওয়া দেহে টেস্টোস্টেরন নামে হর্মোনের মাত্রা কমে যাওয়া পুরুষাঙ্গের উত্থানজনিত সমস্যা বেড়ে যাওয়া এবং অন্ডকোষের ক্যান্সার জলবায়ু পরিবর্তনও পুরুষের উর্বরতার ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলে বেশ কিছু প্রাণীর ওপর চালানো জরিপে আভাস পাওয়া যাচ্ছে যে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধি বিশেষ করে শুক্রাণুর ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে দেখা গিয়েছে যে তাপপ্রবাহ কীটপতঙ্গ ও মানুষের শুক্রাণুর ক্ষতি করে ২০২২ সালের একটি জরিপে দেখা গেছে বৈশ্বিক তাপমাত্রা বৃদ্ধির ফলে গরম পরিবেশে বা উচ্চ তাপমাত্রায় কাজ করলে শুক্রাণুর মানের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়ে পরিবেশগত নানা কারণের পাশপাশি ব্যক্তিগত নানা সমস্যাও পুরুষদের উর্বরতা কমিয়ে দিতে পারে যেমন নিম্নমানের খাদ্য দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকতে হয় এমন জীবনযাপন মানসিক চাপ এ্যালকোহল পান এবং মাদক ব্যবহার বর্তমানে অনেক দম্পতিই অপেক্ষাকৃত বেশি বয়সে সন্তানের পিতামাতা হচ্ছেন তবে নারীদেরকে তাদের জীবনের সবচেয়ে উর্বর সময়কাল বা বায়োলজিকাল ক্লকের কথা যতটা মনে করিযে দেয়া হয় তার বিপরীতে পুরুষদের উর্বরতার ক্ষেত্রে বয়স কোন ব্যাপার নয় এমনটাই আগে মনে করা হতো কিন্তু সেই ধারণার এখন পরিবর্তন হচ্ছে বেশি বয়সে পিতামাতা হবার ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা এবং উর্বরতা কমে যাবার সম্পর্ক দেখা যাচ্ছে এখন বলা হচ্ছে যে পুরুষদের অনুর্বরতাকে আরো ভালোভাবে বুঝতে হবে এবং এ সমস্যা নিরুপণ প্রতিরোধ ও চিকিৎসার ক্ষেত্রে নতুন দৃষ্টিভঙ্গী দরকার একই সাথে দূষণ রোধের জরুরি প্রয়োজনের ব্যাপারে সচেতন হতেও বলা হচ্ছে প্রশ্ন হলো শুক্রাণুর মান বৃদ্ধির জন্য পুরুষরা ব্যক্তিগতভাবে কী কী করতে পারেন স্বাস্থ্যসম্মত খাবার এবং ব্যায়াম দিয়ে শুরু করাটা ভালো কারণ এর সাথে শুক্রাণুর মান উন্নত হবার সম্পর্ক দেখা গেছে অরগ্যানিক খাবার খাওয়া এবং বাইফেনলএ বা বিপিএবিহীন প্লাস্টিক ব্যবহার করার কথা এই বিপিএর সাথে নারী ও পুরুষ উভয়েরই অনুর্বরতার সম্পর্ক আছেচেছ বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসেবে যারা মানসিক স্বাস্থ্য সমস্যায় ভোগেন তাদের অর্ধেকের ক্ষেত্রেই সমস্যাটি শুরু হয় ১৪ বছর বয়সের মধ্যেই বিশ্বব্যাপী ১৫ থেকে ১৯ বছর বয়সীদের মৃত্যুর চতুর্থ প্রধান কারণ হচ্ছে আত্মহত্যা বেসরকারি এক জরিপে দেখা গেছে বাংলাদেশে যতজন আত্মহত্যার পথ বেছে নেন তাদের মধ্যে ১১ শতাংশ কিশোর বয়সী অন্যদিকে জাতিসংঘের শিশু বিষয়ক সংস্থা ইউনিসেফ বলছে করোনাভাইরাসের বৈশ্বিক মহামারির কারণে দীর্ঘদিন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ও ঘরে বন্দি থাকার বিশেষ প্রভাব পড়েছে শিশুকিশোরদের উপর কিন্তু বাংলাদেশে এই বয়সীদের মানসিক স্বাস্থ্য গুরুত্ব সহকারে নেয়া হয় না অন্যদিকে দেশে মানসিক চিকিৎসকের এমনিতেই মারাত্মক ঘাটতি রয়েছে কিশোর বয়সীদের জন্য স্কুল ভিত্তিক কোন কাউন্সেলিংএর ব্যবস্থাও নেই কিন্তু এই বয়সে ছেলেমেয়েরা মানসিক রোগের অধিক ঝুঁকিতে থাকে কিশোর ছেলের সঙ্গে খুবই ঘনিষ্ঠ সম্পর্ক এমন একজন মা ঢাকার বাসিন্দা বৃত্তা রয় একদিন সকালে আবিষ্কার করলেন তার হাসিখুশি ১৫ বছর বয়সী ছেলেটি ফল কাটার ছুরি দিয়ে হাতের কবজি কাটার চেষ্টা করেছে খুব গরমকাল তখন কিন্তু সে ফুল হাতার শার্ট পরে ঘুরে বেড়াচ্ছে স্নান করার পরও ফুল হাতার শার্ট খোঁজ করছিল তখন আমি জিজ্ঞেস করলাম এত গরমে তুমি এসব কী করছ তখন সে আমাকে জড়িয়ে হাউমাউ করে কেঁদে উঠলো আমাকে ছুরিটা দেখাল যেটাতে শুকনো রক্তের দাগ ছিল বৃত্তা রয় বলছিলেন রক্ত বের হলেও ভয়াবহ কিছু ঘটেনি কারণ কবজির রগ থেকে একটু দূরে কাটার চেষ্টা করেছিল তার ছেলে তিনি বলছেন ওর সঙ্গে আমার সম্পর্কটা অনেকটাই বন্ধুর মতো ও যে এতখানি করে ফেলবে এটা আমার ধারণায় ছিল না প্রিয় সন্তানের নিজেকে এমন ক্ষতি করার চেষ্টা সেসময় তার পরিবারের উপর এক বড় বিপর্যয় ডেকে এনেছিল চিকিৎসকেরা সেসময় জানিয়েছিল তাদের ছেলেটি আত্মহত্যা প্রবণতায় ভুগছে শহুরে শিক্ষিত এই পরিবারটি খুব দ্রুতই চিকিৎসকের শরণাপন্ন হয়েছিলো কিন্তু বাংলাদেশের সমাজে অভিভাবকেরা এই বয়সী সন্তানদের মানসিক রোগ বিষয়টি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অসুখ বলে মানতে রাজি নন বরং উচ্ছন্নে যাওয়া বলেই মনে করে করেন যে কারণে কিশোর বয়সীরা মানসিক রোগের ব্যাপারে একটু বেশি ঝুঁকিতে থাকে সেটি ব্যাখ্যা করে তিনি বলছেন এই সময়টা তাদের হরমোন পরিবর্তন হয় সে কারণে তারা অনেক বেশি আবেগপ্রবণ হয়ে ওঠে এই কারণে তারা দ্রুত আনন্দ পায় কষ্ট পায় দ্রুত রেগে যায় বা ভয় পায় এসব আবেগ অনেক বেশি থাকার কারণে সবকিছু তাদের উপর বেশি প্রভাব ফেলে বয়ঃসন্ধিকালে সে যে শারীরিক পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে যায় তাতে নিজেকে নিয়ে দ্বিধা তৈরি হয় কিশোর বয়সে অনেক নতুন কিছুর সাথে হঠাৎ পরিচয় হয় মানসিকভাবে প্রস্তুত না হলেও মাসিক শুরু হওয়া স্তনের গঠন বৃদ্ধি শরীরের বিভিন্ন স্থানে বাড়তি লোম গলার স্বর পরিবর্তন এসব হঠাৎ করেই বদলে দেয় পৃথিবী এসব পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে পারে না অনেকে কৈশোরে বিষণ্ণতা উদ্বেগ রাগ নিজের ক্ষতি হয় এমন কিছু করা আত্মহত্যা প্রবণতা মানুষের সাথে মেলামেশায় অস্বস্তি নিজেকে নিয়ে আত্মবিশ্বাসের ঘাটতি দেখা দিতে পারে আবার উল্টো অতি আত্মবিশ্বাসী ও আক্রমণাত্মক হয়ে উঠতে পারে অনেকে সে বড় হয়ে গেছে এমন ধারণা থেকে বাবামায়ের অবাধ্য হয়ে উঠতে পারে এই কারণে এই বয়সে ভুল হওয়ার সম্ভাবনাও থাকে কিশোর বয়সে নিষিদ্ধ কিছুর প্রতি কৌতূহল থেকে অনেকে মাদকাসক্ত হয়ে ওঠে পর্নোগ্রাফির দিকে ঝুঁকতে থাকে পরবর্তীতে মানসিক স্বাস্থ্যের উপর এরও প্রভাব পড়তে পারে কিশোর বয়সীরা সামাজিক কারণেও মানসিক রোগের ঝুঁকিতে থাকে স্তন মাসিক বাড়তি লোম গলার স্বর এগুলো নিয়ে অভিভাবক আত্মীয় স্বজন প্রতিবেশীরা যে মনোভাব প্রকাশ করে সেটিও কৈশোরে মনের উপর প্রভাব ফেলে দাড়ি সুন্দরভাবে না গজালে স্তন বেশি বড় হলে বা ছোট হলে যেসব কথা তাদের শুনতে হয় এটি কিশোর বয়সীদের মধ্যে আত্মসচেতনতা বাড়িয়ে দেয় কিছু আচরণগত পরিবর্তন রয়েছে যা অভিভাবকদের একেবারেই এড়িয়ে যাওয়া উচিৎ নয় এই পরিবর্তন কিশোর বয়সী সন্তানের মানসিক স্বাস্থ্য বিষয়ে তাদের আগেভাগে সঙ্কেত দিতে পারে কয়েকটি লক্ষণ ও আচরণগত পরিবর্তন সম্পর্কে ধারণা দিলেন তিনি প্রাণবন্ত ছেলে মেয়েদের হঠাৎ করে মন মরা হয়ে যাওয়া নিজেকে গুটিয়ে ফেলা কথা বলা ও মানুষের সাথে মেলামেশা কমে যাওয়া আবেগ ওঠা নামা করা যে কাজে আনন্দ লাগতো সেটিতে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা দ্রুত বিরক্ত হওয়া ঘরের ভেতরে দরজা বন্ধ করে বসে থাকা রাতে জেগে থাকা এবং দিনে ঘুমানো মৃত্যুর কথা বলা নিজের ক্ষতি করার চেষ্টা করা একা একা কথা বলা ও হাসা যারা শান্ত ছিল তারা হঠাৎ অতিরিক্ত কথা বলতে শুরু করা অভিভাবকদের এক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় দায়িত্ব কথা বলার সুযোগ দিতে হবে তার পাশে তারা আছেন সেভাবে আশ্বস্ত করতে হবে বন্ধুত্বপূর্ণ আচরণের মাধ্যমে তাকে কিছু না লুকিয়ে সরাসরি পরিবর্তনগুলো ব্যাখ্যা করতে হবে ইতিবাচক কিছুতে আগ্রহী করে তুলতে হবে এরকম অনেক কিছুই অভিভাবকেরা করতে পারেন তবে সবচেয়ে বড় কথা হচ্ছে যে আচরণগত পরিবর্তনগুলো উল্লেখ সেগুলো খেয়াল করলে বিশেষজ্ঞের কাছে অবশ্যই নিয়ে যেতে হবে শাসন করলে বড় হলে ঠিক হয়ে যাবে এমন কথা বলা চলবে না মায়ের প্রথম মাসিক যে বয়সে হয়েছে তার সাথে ছেলের বয়ঃসন্ধিকাল কবে শুরু হবে তার একটি সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করছেন বিজ্ঞানীরা ডেনমার্কে ১৬ হাজার মা ও শিশুর চিকিৎসা সম্পর্কিত উপাত্ত বিশ্লেষণ করে এমন ধারনা করছেন তারা তাতে দেখা গেছে যেসব মায়েদের মাসিক তার বয়সী অন্য মেয়েদের তুলনায় আগে শুরু হয়েছে তাদের জন্ম দেয়া ছেলেদের বগলের চুল একই বয়সী অন্য ছেলেদের তুলনাই আড়াই মাস আগে গজাতে শুরু করেছে তাদের গলার স্বরে পরিবর্তন ও মুখে ব্রণ ওঠা শুরু হয়েছে আড়াই মাস আগে প্রজনন বিষয়ক পত্রিকা হিউম্যান রিপ্রোডাকশন জার্নাল এই গবেষণাটি করেছে কি বলছে গবেষণা বয়ঃসন্ধিকাল আগে বা পরে শুরু হয়েছে এমন রোগীদের সঙ্গে যখন চিকিৎসকেরা দেখা করেছেন তখন তারা তাদের পারিবারিক ও বংশগত ইতিহাস সংগ্রহ করেছেন মায়ের বয়ঃসন্ধিকালের সাথে এই যে সম্পর্কে সেনিয়ে একটি প্রচলিত ধারনা ছিল কিন্তু এখন আমাদের প্রাপ্ত উপাত্ত তা প্রমাণ করছে বিশ্বব্যাপী বয়ঃসন্ধি শুরুর সময়কাল এগিয়ে আসছে যুক্তরাজ্যে গত এক দশক আগে যখন ছেলে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হতো এখন তার থেকে এক মাস মতো আগে তা শুরু হচ্ছে সেখানে মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল শুরুর গড় বয়স ১১ বছর আর ছেলেদের তা ১২ বছর উন্নত স্বাস্থ্য ও পুষ্টিকর খাবারের সাথে এর সম্পর্ক রয়েছে বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করেন কিন্তু বয়ঃসন্ধিকাল আগে পরে শুরু হওয়ার সাথে শরীরের অধিক ওজন বা স্থূলতারও সম্পর্ক রয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ২০১৫ সালে করা এক গবেষণায় দেখা গেছে বয়ঃসন্ধিকাল আগে বা পরে শুরু হওয়ার সাথে ডায়াবেটিস স্থূলতা হৃদরোগের সম্পর্ক রয়েছে নারীদের মেনোপজ আগে হওয়ার সাথেও স্থূলতার সম্পর্ক পাওয়া গেছে মানসিক স্বাস্থ্য ও বয়ঃসন্ধিকাল ৮ থেকে ১১ বছরের মধ্যে যদি মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয়ে যায় তাহলে সেটিকে বলা হচ্ছে আগেভাগে শুরু হওয়া আর যদি তা শুরু হতে ১৫ থেকে ১৯ বছর লেগে যায় তাহলে সেটিকে বলা হচ্ছে সময়ের চেয়ে দেরিতে শুরু হওয়া ছেলেদের জন্য সাধারণ বয়ঃসন্ধিকাল হল ৯ থেকে ১৪ বছর এই বছরের জানুয়ারি মাসে যুক্তরাষ্ট্রে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়েছে মেয়েদের আগে বয়ঃসন্ধিকাল শুরুর সাথে কৈশোরে ও প্রাপ্তবয়স্ক হওয়ার পর তার মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক রয়েছে ২০১৬ সালে করা একটি গবেষণার মুল গবেষকদের একজন বলছেন মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল কখন শুরু হবে তার সাথে বাবা মায়ের জিনের প্রভাব কম বরং পারিপার্শ্বিক পরিবেশ ও শরীরের বৃদ্ধির উপর তা বেশি নির্ভরশীল মানুষের জীবনের যে সময়টিকে বয়ঃসন্ধিকাল বলে ধরা হয় সেটা কত বছর ধরে চলে এক নতুন গবেষণার ভিত্তিতে বিজ্ঞানীরা দাবি করছেন আগে যা ভাবা হতো এই বয়ঃসন্ধিকালের মেয়াদ আসলে তার চেয়ে অনেক বেশি দশ বছর বয়সে শুরু হয়ে তা চলে ২৪ বছর পর্যন্ত এর আগে উনিশ বছর বয়সকেই বয়ঃসন্ধিকালের শেষ সীমা বলে মনে করা হতো কেন মানুষের বয়ঃসন্ধিকাল বলে সময়টার মেয়াদ বাড়ছে তার নানা কারণ দেখিয়েছেন বিজ্ঞানীরা তরুণ ছেলেমেয়েরা এখন অনেক দীর্ঘ সময় ধরে পড়াশোনা চালিয়ে যাচ্ছে তাদের বিয়ে করতে এবং সন্তান নিতে দেরি হচ্ছে এবং এসবের ফলে কখন মানুষ আসলে 'প্রাপ্তবয়স্ক' হচ্ছে সেই ধারণাও বদলে যাচ্ছে 'ল্যান্সেট চাইল্ড এন্ড এডোলেসেন্ট হেলথ জার্নালে' এ নিয়ে বিজ্ঞানীরা একটি লেখা প্রকাশ করেছেন সেখানে তারা বলেছেন আইনকে যুগোপযোগী করে বয়ঃসন্ধিকালের সংজ্ঞা নতুন করে নির্ধারণ করার সময় এসেছে তবে অন্য একজন বিশেষজ্ঞ এর বিরুদ্ধে সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন এর ফলে তরুণদেরকে অপরিপক্ক বলে বিবেচনার ঝুঁকি আছে বয়ঃসন্ধিকালের শুরু মানুষের মস্তিস্কের একটি অংশ যা 'হাইপোথ্যালামাস' নামে পরিচিত সেখান থেকে যখন হরমোন নিঃসরণ শুরু হয় তখন থেকেই বয়ঃসন্ধিকালের শুরু বলে মনে করা হয় এই হরমোন তখন মানুষের শরীরের পিটুইটারি গ্ল্যান্ড এবং গোনাডাল গ্ল্যান্ডগুলোকে সক্রিয় করে তোলে আগে সাধারণত ১৪ বছর বয়সের দিকে মানুষের শরীরে এই পরিবর্তন ঘটতো কিন্তু উন্নত দেশগুলোতে যেভাবে বিগত শতকে মানুষের স্বাস্থ্য এবং পুষ্টির ব্যাপক উন্নতি হয়েছে তার ফলে বয়ঃসন্ধি শুরুর সময় নেমে আসে দশ বছরের কাছাকাছি যুক্তরাজ্যের মতো শিল্পোন্নত দেশে গত দেড়শো বছরে মেয়েদের ঋতুমতী হওয়ার গড় বয়স প্রায় চার বছরে কমে এখন দশে নেমে এসেছে প্রায় অর্ধেক মেয়ের ঋতুস্রাব এখন শুরু হয় ১২ হতে ১৩ বছর বয়সে শারীরিক বৃদ্ধি যখন থামে কেন বয়ঃসন্ধিকালের সংজ্ঞায় এর বয়সসীমা আরও বাড়ানো উচিৎ তা নিয়ে নানা ধরণের যুক্তি দেয়া হচ্ছে একটা যুক্তি হচ্ছে মানুষের শরীর এখন আগের চেয়ে অনেক বেশি সময় ধরে বাড়ে যেমন মানুষের মস্তিস্ক এখন বিশ বছর বয়সের পরেও বিকশিত হতে থাকে এটি আগের চেয়ে দ্রুত এবং অনেক বেশি দক্ষতার সঙ্গে কাজ করে আর অনেক মানুষের 'আক্কেল দাঁত' এখন ২৫ বছরের আগে গজায় না জীবনের মাইলফলক মানুষ এখন অনেক বেশি বয়সে বিয়ে করছে এবং তাদের সন্তান নেয়ার বয়সও পিছিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাজ্যের জাতীয় পরিসংখ্যান দফতরের হিসেবে অনুযায়ী ইংল্যান্ড এবং ওয়েলসে ২০১৩ সালে পুরুষদের প্রথম বিয়ের গড় বয়স ছিল ৩২ দশমিক ৫ বছর এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে ৩০ দশমিক ৬ বছর ১৯৭৩ সালের তুলনায় প্রথম বিয়ের গড় বয়স প্রায় ৮ বছর বেড়ে গেছে যে বিজ্ঞানীরা এই গবেষণা চালিয়েছেন তাদের প্রধান অধ্যাপক সুজান সয়্যার বলেন যদিও যুক্তরাজ্যে ১৮ বছর বয়সেই একজন আইনত প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে গণ্য হতে শুরু করেন তারা কিন্তু পুরোপুরি প্রাপ্তবয়স্ক হিসেবে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালন শুরু করেন আরও অনেক পরে তাঁর মতে দেরীতে সংসার বাঁধা দেরীতে বাবামা হওয়া অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হতে বিলম্ব হওয়া এসবের ফলে 'বয়ঃসন্ধিকালের' সীমানা এখন অনেক সম্প্রসারিত হয়েছে অনেকে ভাবেন ওজন কমানোর জন্য মানুষ ব্যায়াম করবে কিন্তু পুষ্টিবিদেরা বলছেন ওজন কমাতে যেমন ব্যায়াম প্রয়োজন ঠিক তেমনি ওজন বাড়াতেও ব্যায়াম করা দরকার প্রতিদিন নিয়ম করে ব্যায়াম করলে ক্ষুধা বাড়বে হজম প্রক্রিয়া ভালো হবে এবং ঘুম ভালো হবে এজন্য জিমে যেতে পারেন চাইলে ফ্রিহ্যান্ড এক্সারসাইজ করতে পারেন কিংবা ইয়োগা সাইক্লিং বা সাঁতারও কাটতে পারেন শারীরিক কসরতের সাথে মানসিক প্রশান্তির জন্য ইয়োগা করতে পারেন শরীরকে যথাযথ কাজ করানোর অবস্থায় সুস্থ রাখার জন্য ঘুম খুবই প্রয়োজন ওজন বাড়ানোর জন্যও একথা সত্য প্রতিদিন ৬৮ ঘণ্টা অবশ্যই ঘুমাতে হবে ঘুম এর থেকে কম হওয়া যাবে না কারণ পর্যাপ্ত ঘুম না হলে শরীরে যাওয়া খাবার ঠিকমত হজম হবে না এবং শরীরে পুষ্টির যোগান ঠিকমত হবে না ঘুম যাতে পর্যাপ্ত হয় সেজন্য সময়মত ঘুমাতে যাওয়া এবং ঘুমানোর আগে একটু হালকা ব্যায়াম করার অভ্যাস করা যেতে পারে বিশেষজ্ঞরা বলছেন সমাজে হেয় হওয়ার ভয় স্বাস্থ্য সেবার অভাব এবং অসচতেনতার কারণে বিশাল পরিমাণ মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য চিকিৎসার বাইরে রয়েছেন জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের সহযোগী অধ্যাপক হেলাল উদ্দিন আহমেদ বলেন তিন ধরনের কারণে মানুষ মানসিক সমস্যার চিকিৎসা নিতে যায় না এর মধ্যে প্রথম কারণ হিসেবে সমাজের প্রচলিত স্টিগমাকে দায়ী করেন তিনি মানসিক সমস্যা নিয়ে সমাজে এক ধরনের কুসংস্কার প্রচলিত রয়েছে বলে মনে করেন তিনি বলেন মানুষ এটাকে প্রকাশ করতে চায় না লুকিয়ে রাখতে চায় মানুষ মনে করে যে মানসিক সমস্যা রয়েছে এটা প্রকাশিত হলে তারা সমাজের চোখে হেয় হয়ে যাবেন এ নিয়ে এক ধরনের স্টিগমা তাদের মধ্যে কাজ করে বলেন তিনি দ্বিতীয় বিষয়টি হচ্ছে মানসিক স্বাস্থ্য সেবার অপ্রতুলতা রয়েছে মেডিকেল কলেজ কিংবা টারশিয়ারি পর্যায় ছাড়া আর কোথাও এই সেবা পাওয়া যায় না বিশেষায়িত হাসপাতাল রয়েছে মাত্র দুটি জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের হিসাবে দেশে ১৮ কোটি মানুষের জন্য এই মুহূর্তে ২৭০ জন মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক রয়েছে আর কাউন্সেলিংয়ের জন্য সাইকোলজিস্ট রয়েছেন মাত্র ২৫০ জন যেটা অপ্রতুল এক বছরে সাত থেকে ১০ জনের বেশি মানসিক রোগ বিশেষজ্ঞ প্রস্তুত হচ্ছে না বলেও জানানো হয় যার কারণে অনেকেই এই সেবা নেয়ার সুযোগ পাচ্ছে না বলে মনে করেন বিশেষজ্ঞরা তৃতীয় কারণ হিসেবে মি আহমেদ মানুষের সাধারণ অসচেতনতাকে দায়ী করেছেন তিনি বলেন অনেক সময় মানুষ বোঝেই না যে তার আচরণগত সমস্যাটি মানসিক কারণে হয়েছে বিপুল পরিমাণ মানুষ মানসিক স্বাস্থ্য সেবার বাইরে থাকায় পরিস্থিতি আরো খারাপ হচ্ছে এবং তারা এক পর্যায়ে সমাজের বোঝায় পরিণত হচ্ছে এই পরিস্থিতির উন্নয়নে আরো দক্ষ জনশক্তি গড়ে তোলা প্রয়োজন বলেও মনে করেন হেলাল উদ্দিন আহমেদ পর্নোগ্রাফিতে যে সেক্স দেখানো হয় তার সঙ্গে বাস্তব জীবনের সেক্সের কোন সম্পর্ক নেই তিন চতুর্থাংশ নারী পুরুষ বলেছেন পর্নে যেভাবে সেক্স দেখানো হয় সেটা একেবারেই ভিন্ন সহজ কথায় পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের মূল কারণ বীর্যে শুক্রাণুর পরিমাণ কম হওয়া ব্রিটিশ স্বাস্থ্য সেবা প্রতিষ্ঠান এনএইচএসের এক পরিসংখ্যানে বলা হয় যে দম্পতিদের সন্তান হয়না তাদের একতৃতীয়াংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় এর কারণ হচ্ছে স্বামীর শুক্রাণুর মান নিম্ন ও সংখ্যা কম হওয়া চিকিৎসকদের মতে প্রতি মিলিলিটারে শুক্রাণুর সংখ্যা ১৫ মিলিয়ন বা দেড় কোটির কম হলেই প্রাকৃতিকভাবে গর্ভধারণে সমস্যা হতে পারে সাম্প্রতিক আন্তর্জাতিক গাইডলাইন অনুযায়ী প্রতি মিলিলিটারে ১৫মিলিয়নের বেশি শুক্রাণু থাকলেই তাকে স্বাভাবিক বলা হয় যে দম্পতিরা সন্তান চাইছেন তাদের এক বছর চেষ্টার পরও গর্ভসঞ্চার না হলেই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে বলা হয় বিজ্ঞানীরা এর একাধিক কারণ চিহ্নিত করেছেন তবে এটাও মনে রাখতে হবে যে অনেক রোগীর ক্ষেত্রে শুক্রাণুর সংখ্যা কম হবার কারণ স্পষ্ট বোঝা যায় না কী কী শুক্রাণুর সংখ্যা ও স্বাস্থ্যের ওপর বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে যেমন তাপমাত্রা মাদক সেবন এবং অতিরিক্ত চাপা অন্তর্বাস পরার কথা এর কোনটাই ভুল নয় বিশেষজ্ঞরা বলেন বায়ুদূষণ থেকে শুরু করে জীবনযাপন পদ্ধতি পর্যন্ত অনেক কিছুই শুক্রাণুর স্বাস্থ্যের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে বিজ্ঞানীরা সাধারণভাবে যে কারণগুলোর কথা উল্লেখ করেন এর মধ্যে প্রধান ক'টি এখানে উল্লেখ করা হলো পুরুষের দেহে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা বা কম হরমোন উৎপাদন ক্লাইনফেল্টার সিনড্রোম নামে এক ধরণের জেনেটিক সমস্যা কোন কোন শিশুর জন্মের সময় অন্ডকোষ দেহের ভেতরেই রয়ে যায় এটিও শুক্রাণুর সমস্যা ঘটাতে পারে দেহের যে নালীগুলো অন্ডকোষ থেকে শুক্রাণু বহন করে নিয়ে যায় তা জন্ম থেকে অনুপস্থিত থাকা বা কোন রোগ বা আঘাতজনিত কারণে নালীগুলো বন্ধ হয়ে যাওয়া যৌনাঙ্গের কোন সংক্রমণ যেমন ক্ল্যামাইডিয়া গনোরিয়া বা প্রস্টেট গ্ল্যান্ডের প্রদাহ অন্ডকোষের শিরা বড় হয়ে যাওয়া বা ভ্যারিকোসিলস অন্ডকোষে কোন অস্ত্রোপচার বা হার্নিয়ার অপারেশন অতিরিক্ত মদ্যপান ধূমপান গাঁজা এবং কোকেনের মত মাদক সেবন অতিরিক্ত ওজন বেড়ে যাওয়া বা স্থূলতা কিছু কিছু ওষুধ যেমন টেস্টোস্টেরন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দীর্ঘকাল ধরে এ্যানাবোলিক স্টেরয়েড ব্যবহার কেমোথেরাপির মত ক্যান্সারের ওষুধ কিছু কিছু এ্যান্টিবায়োটিক বা বিষণ্ণতা কাটানোর ওষুধও শুক্রাণুর মান ও সংখ্যা কমিয়ে দিতে পারে শুক্রাণুর সংখ্যা ও স্বাস্থ্য বাড়াতে আপনি কী করতে পারেন বিজ্ঞানীরা বলেন আপনার জীবনযাপনে বেশ কিছু পরিবর্তন এনেও আপনি শুক্রাণুর সংখ্যা ও স্বাস্থ্য বাড়াতে পারেন যাতে সন্তানের পিতা হবার সম্ভাবনা বাড়বে পুরুষদের অন্ডকোষ দেহের বাইরে ঝুলে থাকে কারণ তাতে দেহের ভেতরের তাপমাত্রার চেয়ে কিছুটা কম উষ্ণ অবস্থায় সবচেয়ে ভালো মানের শুক্রাণু তৈরি হতে পারে সেকারণে একজন পুরুষ যদি দীর্ঘ সময় ধরে খুব গরম পরিবেশে কাজ করেন তাহলে তার উচিত হবে নিয়মিত স্বল্প সময়ের বিরতি নেয়া তাকে যদি দীর্ঘ সময় ধরে বসে থাকতে হয় তাহলে তার নিয়মিত উঠে দাঁড়ানো এবং একটু হেঁটে আসা দরকার অতিরিক্ত টাইট অন্তর্বাস পরার ফলে অন্ডকোষের তাপমাত্রা অন্তত ১ ডিগ্রি বেড়ে যায় বলে মনে করা হয় অবশ্য একটি গবেষণায় দেখা গেছে যে চাপা অন্তর্বাসের কারণে শুক্রাণুর মানের ওপর তেমন কোন প্রভাব পড়ে না তবে সন্তান নেবার পরিকল্পনা থাকলে আপনি অপেক্ষাকৃত ঢিলা আন্ডারওয়্যার পরতে পারেন সন্তানের পিতা হবার চেষ্টা করছেন এমন পুরুষদের ধূমপান অতিরিক্ত মদ্যপান গাঁজা কোকেন বা স্টেরয়েড গ্রহণ এড়িয়ে চলা উচিত কারণ এগুলো পুরুষের শুক্রাণুর মান ও উর্বরতা কমিয়ে দেয় সপ্তাহে ১৪ ইউনিটের বেশি মদ্যপান এড়িয়ে চলুন খাদ্যের ক্ষেত্রে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হলো স্বাস্থ্যকর ও পুষ্টিগুণে ভারসাম্যপূর্ণ খাবার খাওয়া যা শুক্রাণুর স্বাস্থ্য ভালো রাখবে প্রতিদিন ভাত আলু বা রুটির সাথে অন্তত পাঁচ রকম ফল ও সবজি শিম ডাল এবং দই খান সাথে আরো খাবেন মাছ ডিম ও মাংসের মত প্রোটিনজাতীয় খাদ্য পুরুষদের ওজন বেশি হলে তা শুক্রাণুর সংখ্যা ও মান কমিয়ে দিতে পারে তাই নিজের বডি ম্যাস ইনডেক্স বা বিএমআই হিসাব করুন এবং তা ২৫এর নিচে রাখুন বিএমআই হিসেব করা খুবই সহজ আপনার ওজনকে (কিলোগ্রামে) আপনার উচ্চতার (মিটারে) বর্গ দিয়ে ভাগ করলে যে সংখ্যাটা পাবেন তাই হলো আপনার বিএমআই এটা ২৫ এর বেশি হলেই আপনাকে ওজন কমানোর জন্য শরীরচর্চা এবং খাবারদাবার নিয়ন্ত্রণ করতে হবে সবশেষে মানসিক চাপমুক্ত থাকাটাও গুরুত্বপূর্ণ মানসিক চাপের কারণে যৌন ইচ্ছা কমে যেতে পারে কমে যেতে পারে শুক্রাণু উৎপাদন বিশেষ করে ইউরোপ ও উত্তর আমেরিকা মহাদেশের দেশগুলোতে এটা এক বড় সমস্যা হিসেবে আবির্ভূত হচ্ছে বিশ্বের বেশ কয়েকটি দেশের বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্যোগে চালানো এক জরিপে দেখা গেছে গত ৪০ বছর ধরেই পশ্চিমা দেশগুলোয় পুরুষদের শুক্রাণুর সংখ্যা ৫০ থেকে ৬০ শতাংশ পর্যন্ত কমে যাচ্ছে ১৯৭৩ থেকে ২০১১ পর্যন্ত সময়কালের উপাত্ত নিয়ে উত্তর আমেরিকা ইউরোপ অস্ট্রেলিয়া এবং নিউজিল্যান্ডের পুরুষদের ওপর করা হয়েছিল এ গবেষণা বিশ্বজুড়ে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের ওপর চালানো ২০১৫ সালের এক জরিপে দেখা যায় পৃথিবীতে দম্পতিদের প্রায় ১৫ শতাংশ বন্ধ্যাত্বের সমস্যায় ভুগছেন এর মধ্যে ২০ থেকে ৩০ শতাংশ ক্ষেত্রে সন্তান না হবার জন্য শুধু পুরুষই দায়ী আর সার্বিকভাবে বন্ধ্যাত্বের পেছনে পুরুষের ভুমিকা আছে ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রে এই জরিপে দেখা যায় ইউরোপ ও আমেরিকা মহাদেশে পুরুষদের কারণে বন্ধ্যাত্বের পরিমাণ প্রায় ৫০ শতাংশ এবং এশিয়া মহাদেশে এর পরিমাণ ৩৭ শতাংশ কিন্তু গবেষকরা উল্লেখ করেছেন যে পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের ব্যাপারে নির্ভুল পরিসংখ্যানের অভাব রয়েছে এর কারণ নারীদের বন্ধ্যাত্ব নিযে যতটা আলোচনা হয় নানা সামাজিক কারণে অনেক দেশেই পুরুষদের বন্ধ্যাত্ব নিয়ে ততটা আলোচনা হয় না ওরাল সেক্সের মাধ্যমে নারী যৌনাঙ্গে সংক্রমণ ঘটে 'ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস' বা 'বিভি' নামে রোগ হতে পারে বলে এক গবেষণায় জানা যাচ্ছে প্লস বায়োলজি নামে এক জার্নালে এই গবেষণার বিস্তারিত প্রকাশিত হয়েছে এবং এতে বলা হচ্ছে যে ওরাল সেক্সের মাধ্যমে নারী দেহে এই রোগ বাসা বাঁধে তবে বিভি কোন সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজ বা যৌনরোগ নয় নারীর ভ্যাজাইনা বা যোনিতে সাধারণ যেসব ব্যাকটেরিয়া থাকে সেখানে কোন ভারসাম্যের অভাব দেখা গেলে বিভি হতে পারে যারা এই রোগের শিকার হন তাদের দেহে বিভি'র কোন উপসর্গ নাও দেখা যেতে পারে তবে তাদের যোনি থেকে দুর্গন্ধযুক্ত রস নিঃসৃত হয় মানুষের মুখে যেসব ব্যাকটেরিয়া থাকে তা নারীর যৌনাঙ্গে ছড়িয়ে পড়লে কী প্রভাব পড়ে এই গবেষণায় বিজ্ঞানীরা সেটাই দেখার চেষ্টা করেছেন বিভি এমনিতে কোন সিরিয়াস অসুখ না তবে যেসব নারী বিভিতে আক্রান্ত হন তারা অন্যান্য যৌনরোগের শিকার হতে পারেন এবং তাদের মূত্রনালিতে সংক্রমণ দেখা দিতে পারে সন্তানসম্ভবা নারীর ক্ষেত্রে বিভিতে আক্রান্ত নারীর সন্তান স্বাভাবিক সময়ের আগেই জন্ম নেয়ার ঝুঁকি রয়েছে বিভি নারী স্বাস্থ্যের একটা সাধারণ সমস্যা যাদের ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হয় তাদের যোনি থেকে এক ধরনের রস নিঃসৃত হয় এবং তাতে উৎকট আঁশটে গন্ধ থাকে যোনি থেকে যে স্বাভাবিক রস বের হয় বিভি হলে তার রঙ এবং ঘনত্বে পরিবর্তন দেখা যায় সেই যোনি রস পাতলা পানির মত হয় এবং দেখতে অনেকটা ঘোলাটে সাদা হয় আপনার বিভি হয়েছে কিনা তা আপনার ডাক্তার বলে দিতে পারবেন যোনি রসের নমুনা পরীক্ষা করে বিভির উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যায় পরীক্ষায় সংক্রমণের উপস্থিতি সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেলে অ্যান্টিবায়োটিক ট্যাবলেট জেল কিংবা ক্রিম ব্যবহার করে সংক্রমণ দূর করা হয় বিভি নেই যেসব নারীর তাদের যোনিতেও বহু 'ভাল' ব্যাকটেরিয়া থাকে এদের বলা হয় ল্যাকটোব্যাসিলাই এরা পিএইচ লেভেল কমিয়ে যোনিপথের অ্যাসিডিক বা অম্ল ভাব ধরে রাখে কিন্তু কখনও কখনও এই স্বাস্থ্যকর ভারসাম্যটি বিনষ্ট হলে যোনিতে অন্যান্য জীবাণুর বংশবৃদ্ধি বেড়ে যায় এ রকমটা কেন ঘটে তা পুরোপুরিভাবে স্পষ্ট না তবে নীচের কারণগুলোর জন্য বিভি হতে পারে আপনার যৌন জীবন খুবই ব্যস্ত (যেসব নারী সেক্স করেন না তাদেরও বিভি হতে পারে) আপনার যৌন সঙ্গীর বদল ঘটেছে আপনি আইইউডি জন্মরোধ ব্যবস্থা ব্যবহার করেন আপনি আপনার যোনির আশেপাশে সুগন্ধি ব্যবহার করেন প্লস বায়োলজি সাময়িকীতে প্রকাশিত গবেষণা থেকে জানা যাচ্ছে মানুষের মুখ গহ্বরে মাড়ির রোগ কিংবা ডেন্টাল প্লেক থাকলে তাতে যে ব্যাকটেরিয়া দেখা যায় তার কারণে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হতে পারে এই ব্যাকটেরিয়ার ক্ষতিকর আচরণ সম্পর্কে জানার জন্য বিজ্ঞানীরা মানুষের যোনি এবং ইঁদুরের ওপর এই গবেষণা চালিয়েছেন তারা দেখেছেন বিশেষ একটি ব্যাকটেরিয়া ফুসোব্যাকটেরিয়াম নিউক্লিয়েটাম বিভি'র সাথে সম্পর্কিত ব্যাকটেরিয়াগুলোর বংশবৃদ্ধিতে সহায়তা করে এই গবেষণার সাথে জড়িত ক্যালিফোর্নিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের ড অ্যামান্ডা লুইস এবং তার সহকর্মীরা জানাচ্ছেন ওরাল সেক্স থেকে কোন কোন সময় নারীর যোনিতে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস হতে পারে এই গবেষণা থেকে সেই প্রমাণ পাওয়া যাচ্ছে দুটি নারীর মধ্যে লেসবিয়ান সম্পর্কসহ বিভিন্ন ধরনের যৌন সঙ্গমের ফলে বিভি হতে পারে একথা বিশেষজ্ঞদের অজানা নয় ব্রিটিশ অ্যাসোসিয়েশন অফ সেক্সসুয়াল হেলথএর মুখপাত্র অধ্যাপক ক্লডিয়া এস্টকোর্ট বলছেন এই গবেষণার মধ্য দিয়ে ব্যাকটেরিয়াল ভ্যাজিনোসিস সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের ধারণা আরও পরিষ্কার হবে অন্য কোন সমস্যা থাকুক বা না থাকুক ওরাল সেক্সের মাধ্যমে যৌনরোগের জীবাণু এবং নানা ধরনের ব্যাকটেরিয়া স্ত্রী অঙ্গে প্রবেশ করতে পারে হারপিস সংক্রমণ হল একটি ভাইরাল সংক্রমণ যা মুখের চারপাশে ঘা বা ঠোঁটের (ওরাল হার্পিস) বা যৌনাঙ্গ বা মলদ্বারের কাছে ঘা (জেনিটাল হারপিস) সৃষ্টি করে এটি হারপিস ভাইরাস (HSV 1 বা HSV 2) দ্বারা সৃষ্ট হয় এটি মৌখিক নিঃসরণ বা ঘা চুম্বনের মাধ্যমে বা সাধারণ জিনিস যেমন টুথব্রাশ পাত্র বা যৌন মিলন ইত্যাদির মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে হার্পিস ভাইরাস সহজেই ছড়িয়ে পড়ে যখন তারা উন্মুক্ত ত্বকের সংস্পর্শে আসে বা যোনি লিঙ্গ মলদ্বার বা মুখের সাথে হার্পিস সবচেয়ে সংক্রামক হিসাবে পরিচিত যখন আলসার হয় ক্ষরণ হয় বা খোলা থাকে তবে আলসার না থাকলেও সংক্রমিত হওয়া সম্ভব বিছানার চাদর টয়লেট সিট বা দরজার নবের মতো পৃষ্ঠের মাধ্যমে হারপিস সংক্রমণের ঝুঁকি নেই হার্পিস ছড়ানোর ঝুঁকি একজন সংক্রামিত পুরুষ সঙ্গী থেকে একজন অসংক্রামিত মহিলার থেকে উল্টোটির চেয়ে বেশি একজনের একাধিক যৌন সঙ্গী থাকলে হারপিস ভাইরাস সংক্রমণের ঝুঁকি বেড়ে যায় সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার না করা হারপিস সংক্রমণের বিস্তার বাড়ায় যৌনাঙ্গে হারপিস সহ গর্ভবতী মহিলারা শিশুর মধ্যে হারপিস সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে পারে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের সাথে প্রতিরোধমূলক থেরাপি হারপিস সংক্রমণের বিস্তার রোধে সাহায্য করে HSV1 (হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ1) এর মাধ্যমে ছড়াতে পারে চুম্বন হারপিস সংক্রমণ ছড়াতে পারে একই চামচ বা পাত্র থেকে খাওয়ার ফলে সংক্রমণ ছড়াতে পারে একজন সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে লিপস্টিক শেয়ার করলে আপনার হারপিস সংক্রমণ হতে পারে ঠান্ডা ঘা সহ সঙ্গীর সাথে ওরাল সেক্স HSV1 থেকে যৌনাঙ্গে হারপিস হতে পারে HSV2 (হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ2) এর মাধ্যমে ছড়াতে পারে HSV2 সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে যেকোনো ধরনের যৌন যোগাযোগ হারপিস সংক্রমণ ছড়াতে পারে হারপিস সংক্রমণে আক্রান্ত সঙ্গীর সাথে ওরাল ভ্যাজাইনাল বা এনাল সেক্স করলে রোগের বিস্তার ঘটতে পারে একাধিক যৌন সঙ্গী থাকার ফলে হারপিস ভাইরাস দ্বারা সংক্রামিত হওয়ার সম্ভাবনা বেড়ে যায় দুর্বল ইমিউন সিস্টেম থাকার ফলে হারপিস সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনাও বেশি হতে পারে হারপিস ভাইরাল সংক্রমণের একটি খুব সাধারণ ধরনের এটি নিম্নলিখিত ধরণের ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট হয় হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ 1 (HSV1) এটি সাধারণত মুখের অঞ্চলের চারপাশে ঠান্ডা ঘা বা ফোস্কা সৃষ্টির জন্য দায়ী হারপিস সিমপ্লেক্স ভাইরাস টাইপ 2 (HSV2) এই ধরনের ভাইরাস সাধারণত যৌনাঙ্গে ঘা তৈরি করে হারপিস জোস্টার এই ভাইরাস দাদ (একটি বেদনাদায়ক এবং জ্বলন্ত ত্বকের ফুসকুড়ি) এবং চিকেনপক্স সৃষ্টি করে হারপিস সংক্রমণের বিভিন্ন কারণ হল হারপিস সংক্রমণ সরাসরি ত্বক থেকে ত্বকের যোগাযোগের মাধ্যমে একজন থেকে অন্য ব্যক্তিতে ছড়িয়ে পড়ে এবং এটি অত্যন্ত সংক্রামক স্পর্শ বা চুম্বন HSV 1 সংক্রমণের প্রধান কারণ যেখানে যৌন যোগাযোগ (মুখ যোনি বা পায়ূ যৌন) HSV 2 সংক্রমণের প্রধান কারণ কোনো সুস্থ ব্যক্তি যদি কোনো ব্যক্তিগত জিনিস যেমন টুথব্রাশ বাসন চামচ ইত্যাদি কোনো সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে ভাগ করে নেয় তাহলে সেও সংক্রমিত হতে পারে হার্পিস সংক্রমণ চোখের মাধ্যমেও ছড়াতে পারে আক্রান্ত ব্যক্তির মুখের ঘা স্পর্শ করলে এই সংক্রমণ ছড়াতে পারে সুরক্ষা ছাড়া যৌন মিলনের ফলে যৌনাঙ্গে হারপিস সংক্রমণ হতে পারে হারপিস ভাইরাস উপস্থিত সুপ্ত হতে পারে এবং হারপিস সংক্রমণের লক্ষণ বা আক্রমণ নিম্নলিখিত অবস্থার অধীনে ঘটতে পারে অন্তর্নিহিত স্বাস্থ্য অবস্থার কারণে ক্লান্তি বা ক্লান্তি সাধারণ দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা রোগী যদি চাপের মধ্যে থাকে (শারীরিক বা মানসিক) ইমিউনোকম্প্রোমাইজড ব্যক্তিরা (কেমোথেরাপি নিচ্ছেন এইডস আছে ওষুধ বা স্টেরয়েড থেরাপি গ্রহণ করছেন) ঋতুস্রাব (মহিলাদের পিরিয়ডের সময়) যৌনাঙ্গের সাথে সম্পর্কিত ট্রমা জ্বর রোদে পোড়া বা সূর্যের দীর্ঘক্ষণ এক্সপোজার হারপিস সংক্রমণের লক্ষণগুলি ব্যক্তি থেকে ব্যক্তিতে পরিবর্তিত হতে পারে যা হারপিস ভাইরাস দ্বারা সংক্রমিত হয় তার উপর নির্ভর করে হারপিস সংক্রমণের কিছু সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছে চুলকানি ঝিঁঝিঁ ধরা বা ত্বকে জ্বালাপোড়া (সাধারণত হারপিস সংক্রমণের প্রথম লক্ষণ) হার্পিসআক্রান্ত ব্যক্তির সাথে যোগাযোগের 2 থেকে 20 দিনের মধ্যে ত্বকে ফোসকা বা ঘা দেখা যায় এবং প্রায় 7 থেকে 10 দিন স্থায়ী হয় তরল ভরা বেদনাদায়ক ফোস্কা জ্বর ঠান্ডা লাগা এবং অন্যান্য ফ্লুএর মতো উপসর্গ ফোলা লিম্ফ নোড পেশী ব্যথা প্রস্রাবের সময় ব্যথা বা মূত্রাশয় পুরোপুরি খালি করতে না পারা চোখের সংক্রমণ (হার্পিস কেরাটাইটিস বলা হয়) মাথাব্যথা ক্লান্তি ক্ষুধামন্দা হারপিস সংক্রমণের নির্ণয় নিম্নলিখিত পদ্ধতি দ্বারা করা হয় শারীরিক পরীক্ষা এখানে ডাক্তার একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ শারীরিক পরীক্ষা করেন ঘাগুলির জন্য মুখ ঠোঁট এবং যৌনাঙ্গের অংশ পরীক্ষা করেন ভাইরাল সংক্রমণের কারণ এবং ধরন শনাক্ত করতে ডাক্তাররা লক্ষণ এবং একটি বিশদ চিকিৎসা ইতিহাস সম্পর্কে প্রশ্ন করতে পারেন HSV পরীক্ষা হার্পিস কালচার টেস্ট নামেও পরিচিত এখানে ডাক্তার মৌখিক গহ্বর বা যৌনাঙ্গে উপস্থিত ফোস্কা বা ঘা থেকে তরলের একটি সোয়াব নমুনা নেন এবং ল্যাব পরীক্ষার জন্য পাঠান এটি সংক্রমণের কারণ ভাইরাস সনাক্ত করতে হয় রক্ত পরীক্ষা এটি অ্যান্টিবডির উপস্থিতি (HSV1 এবং HSV2 এর বিরুদ্ধে) খুঁজে বের করার জন্য করা হয় এটি এমন রোগীদের সংক্রমণ শনাক্ত করতে সাহায্য করে যাদের কোনো ঘা বা ফোসকা নেই হারপিসের জন্য কোন নির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই কোন চিকিৎসা ছাড়াই প্রায়ই ঘা পরিষ্কার হয়ে যায় হারপিস সংক্রমণের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার কিছু অ্যান্টিভাইরাল ওষুধের একটি ডোজ নির্ধারণ করতে পারেন এটি সংক্রমণ কমাতে এবং ত্বকে ফোসকা নিরাময়ে সাহায্য করে সংক্রমণ কমানোর জন্য অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ রয়েছে যেমন Famciclovir (Famvir) Valacyclovir (Valtrex) Acyclovir (Zovirax) Cloviderm Aciherpin ইত্যাদি একটি অ্যান্টিভাইরাল মলম বা ক্রিম ত্বকে জ্বালাপোড়া চুলকানি বা ঝিঁঝিঁর সংবেদন থেকে মুক্তি দিতে সাহায্য করতে পারে হারপিস সংক্রমণ দ্বারা সংক্রমিত হলে একজনের ভাল মৌখিক এবং যৌনাঙ্গের স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা উচিত যৌনাঙ্গে হারপিস দ্বারা সংক্রামিত হলে ঘাগুলিতে কোনও জ্বালা এড়াতে একজনকে ঢিলেঢালা আরামদায়ক পোশাক পরা উচিত এই সংক্রমণের একটি শক্তিশালী চিকিৎসা নেই এবং এটি কিছু সময়ের মধ্যে সমাধান হয়ে যায় হারপিস সিমপ্লেক্সের প্রথম (প্রাথমিক) প্রাদুর্ভাব প্রায়শই সবচেয়ে খারাপ হয় যদিও সমস্ত প্রথম প্রাদুর্ভাব গুরুতর নয় কিছু কিছু এতটাই মৃদু হয় যে আক্রান্ত ব্যক্তি তা লক্ষ্যও করেন না এই কারণে যখন যৌনাঙ্গে হারপিসের প্রথম প্রাদুর্ভাব মৃদু হয় এবং বছর পরে আরেকটি প্রাদুর্ভাব ঘটে তখন ব্যক্তি এটিকে প্রথম প্রাদুর্ভাবের জন্য ভুল করতে পারে কিছু মানুষের শুধুমাত্র একটি প্রাদুর্ভাব আছে অন্যদের জন্য ভাইরাস আবার সক্রিয় হতে পারে সংক্রমণের প্রথম বছরে পুনরাবৃত্তি হওয়ার প্রবণতা বেশি হয় সময়ের সাথে সাথে প্রাদুর্ভাবগুলি কম ঘন ঘন এবং হালকা হতে থাকে এটি ভাইরাসের বিরুদ্ধে শরীর দ্বারা অ্যান্টিবডি (প্রতিরক্ষা) বিকাশের কারণে যেহেতু হার্পিস ইনফেকশনের কোনো নির্দিষ্ট প্রতিকার নেই তাই ভাইরাস সংক্রামিত হওয়া রোধ করা বা অন্য কোনো ব্যক্তির কাছে সংক্রমণ ছড়ানো প্রতিরোধ করা ভালো হারপিস সংক্রমণের বিস্তার রোধ করতে যে পদক্ষেপগুলি অনুসরণ করতে হবে হার্পিস সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের অবশ্যই অন্য ব্যক্তির সাথে শারীরিক যোগাযোগ এড়াতে হবে বাসন টুথব্রাশ তোয়ালে জামাকাপড় প্রসাধনী ঠোঁট বাম ইত্যাদির মতো জিনিসগুলি ভাগ করবেন না কারণ এই আইটেমগুলি সহজেই হার্পিস ভাইরাসকে সংক্রামিত থেকে সুস্থ ব্যক্তির কাছে বহন করতে পারে ডাক্তারের পরামর্শ না দেওয়া পর্যন্ত হার্পিস সংক্রমণের লক্ষণ বা উপসর্গ থাকলে সঙ্গীর সাথে যেকোনো ধরনের যৌন কার্যকলাপ এড়িয়ে চলতে হবে চিকিৎসাধীন রোগীদের অবশ্যই সঠিক স্বাস্থ্যবিধি নির্দেশিকা অনুসরণ করতে হবে নিয়মিত হাত ধুতে হবে শুধুমাত্র পরিষ্কার তুলো দিয়ে ঘাগুলিতে কোনো মলম বা ওষুধ লাগাতে হবে হার্পিস সংক্রমণে আক্রান্ত গর্ভবতী মহিলারা কঠোরভাবে নির্দেশিত ওষুধ সেবন করে অনাগত শিশুর মধ্যে সংক্রমণ ছড়ানো প্রতিরোধ করতে পারে হারপিস সংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য অনুসরণ করা পদক্ষেপগুলি যেকোনো যৌন সংক্রামিত রোগের (STIs) জন্য নিয়মিত পরীক্ষা করান ক্যান্সারের কারণ হতে পারে এমন হারপিস ভাইরাসের নির্দিষ্ট স্ট্রেন পাওয়া রোধ করতে HPV ভ্যাকসিন নেওয়া যেতে পারে নিরাপদ যৌন অনুশীলন অনুসরণ করুন কনডম ব্যবহার দাঁতের বাঁধ বা ওরাল সেক্সের জন্য কনডম ব্যবহার করা আপনার হারপিস সংক্রমণের কোনো লক্ষণ দেখা দিলে যৌন সঙ্গীকে সতর্ক করুন ইত্যাদি ভাল স্বাস্থ্যবিধি অনুশীলনগুলি অনুসরণ করুন (নিয়মিত হাত ধোয়া মুখ এবং যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখা) হারপিস ভাইরাস দ্বারা সৃষ্ট জটিলতাগুলি বেশিরভাগ রোগীদের মধ্যে দেখা যায় যাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা দুর্বল ক্যান্সার (মুখ সার্ভিকাল লিঙ্গ যোনি ভালভা মলদ্বার) হারপিস সংক্রমণের সবচেয়ে গুরুতর জটিলতা হারপিস সংক্রমণের পরে ক্যান্সার হতে কয়েক বছর সময় লাগে এবং এটি হারপিস ভাইরাসের শুধুমাত্র নির্দিষ্ট স্ট্রেইনের সাথে যুক্ত ক্যান্সার প্রতিরোধের জন্য নিয়মিত স্ক্রীনিং পরীক্ষা করা গুরুত্বপূর্ণ (বিশেষ করে যাদের অতীতে হারপিস সংক্রমণ আছে বা ছিল) হারপিস সংক্রমণের অন্যান্য জটিলতা হল রেকটাল (বড় অন্ত্রের অংশ) প্রদাহ এটি পুরুষদের মধ্যে আরো প্রায়ই ঘটে মেনিনজাইটিস (মস্তিষ্ক এবং মেরুদন্ডের তরল) বিরল ক্ষেত্রে যেখানে ভাইরাল সংক্রমণ মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের তরলে ছড়িয়ে পড়ে মূত্রনালীর সংক্রমণ (বিস্তারিত জানুন মূত্রাশয় ক্যান্সারের চিকিৎসা কি) মূত্রথলির প্রদাহ এবং অন্যান্য সম্পর্কিত সমস্যা হারপিস ঘা বা ফোসকার মাধ্যমে সহজেই যৌন সংক্রমণ হওয়া নবজাত শিশু (যেখানে ভাইরাল সংক্রমণ সংক্রামিত মা থেকে গর্ভের ভ্রূণে ছড়িয়ে পড়েছে) অন্ধত্ব গুরুতর মস্তিষ্কের ক্ষতি এবং মৃত্যুর মতো গুরুতর জটিলতা হতে পারে (সবচেয়ে খারাপ ক্ষেত্রে যদি সংক্রামিত মা গর্ভবতী থাকাকালীন সঠিক ওষুধ না নেন) হারপিস সিমপ্লেক্সে আক্রান্ত সুস্থ ব্যক্তিদের মধ্যে গুরুতর জটিলতা খুব কমই ঘটে যাইহোক গুরুতর জটিলতাগুলি প্রায়শই নবজাতকদের মধ্যে ঘটে এবং যাদের দীর্ঘমেয়াদী অসুস্থতা রয়েছে বা দুর্বল প্রতিরোধ ব্যবস্থা রয়েছে তাদের মধ্যে আপনি যদি ক্যান্সারে ভুগছেন এইচআইভি এইডস বা একটি অঙ্গ প্রতিস্থাপন করা হয়েছে আপনি হারপিস সংক্রমণের কোনো লক্ষণ বা উপসর্গ লক্ষ্য করার সাথে সাথে চিকিৎসা সহায়তা নিন এইচআইভি সংক্রমণ এবং হারপিস সংক্রমণের মধ্যে সরাসরি যোগসূত্র রয়েছে বলে জানা যায় হার্পিস সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিদের এইচআইভি সংক্রমণ হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকে যদি সঠিক যৌন স্বাস্থ্যবিধি এবং আচরণ বজায় না রাখা হয় এছাড়াও যারা ইতিমধ্যে এইচআইভিতে ভুগছেন তাদের হারপিস সংক্রমণের আরও গুরুতর এবং বেদনাদায়ক কেস পেতে পারে প্রথমবার যখন একজন ব্যক্তির হারপিস সংক্রমণ হয় তখন ঘাগুলি খুব বেদনাদায়ক হয়৷ ফোসকা ভেঙ্গে যায় এবং বেদনাদায়ক আলসার ছেড়ে যায় যা 24 সপ্তাহের মধ্যে সেরে যায় হ্যাঁ হারপিস সংক্রমণে আক্রান্ত ব্যক্তিরা স্বাভাবিক সুস্থ জীবনযাপন করতে পারে এবং সম্পর্ক রাখতে পারে সঙ্গীর কাছে হারপিস সংক্রমণের পুনরাবৃত্তি বা বিস্তার রোধ করার জন্য একজনকে অবশ্যই সচেতন হতে হবে না যদিও হার্পিস সংক্রমণের সাথে গুরুতর জটিলতা বিরল এটি যৌন মানসিক এবং সামাজিক জীবনকে প্রভাবিত করতে পারে যদি সঠিক সতর্কতা অবলম্বন করা হয় এবং নির্দেশিত ওষুধগুলি অনুসরণ করা হয় তবে একজন ব্যক্তি দীর্ঘ এবং সুখী জীবনযাপন করতে পারে যৌনাঙ্গে হারপিস থাকলে এইচআইভি এইডস বা সার্ভিকাল ক্যান্সার ইত্যাদির ঝুঁকি বাড়ে কিন্তু অন্যথায় এই অবস্থাটি আয়ু কমায় না পেলভিক পেইন হল পেলভিস এলাকায় এমন ব্যথা যা সংক্রমণের লক্ষণ হতে পারে অথবা অপ্রজনন অভ্যন্তরীণ অঙ্গে ব্যথার কারণে ঘটতে পারে অথবা একজন মহিলার ক্ষেত্রে এটি একটি সমস্যার কারণে হতে পারে শ্রোণী অঞ্চলে উপস্থিত প্রজনন অঙ্গ যেমন জরায়ু ডিম্বাশয় ফ্যালোপিয়ান টিউব যোনি এবং সার্ভিক্স পেলভিক ব্যথার সমস্যা যে কাউকেই প্রভাবিত করতে পারে কখনও কখনও পেলভিসে ব্যথা হওয়া স্বাভাবিক তবে অতিরিক্ত ব্যথা অন্যান্য রোগের ঝুঁকি তৈরি করতে পারে পেলভিস হল পেটের নীচের অংশ যা মহিলাদের মধ্যে অন্ত্র মূত্রথলি এবং জরায়ু নিয়ে গঠিত কিছু লোকের মধ্যে পেলভিক ব্যথা হালকা হতে পারে অন্যদের মধ্যে এটি আরও গুরুতর ধারণ করতে পারে আপনার শ্রোণীতে ব্যথা হলে আপনার ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা উচিত এছাড়াও আপনি হালকা শ্রোণী ব্যথার চিকিৎসার জন্য কিছু ঘরোয়া প্রতিকারও চেষ্টা করতে পারেন পেলভিক ব্যথা একটি সাধারণ সমস্যা যা তলপেটে প্রভাবিত করে যা অন্ত্র মূত্রথলি এবং জরায়ু নিয়ে গঠিত পেলভিক ব্যথা মূত্রনালীর পরিপাক ট্র্যাক্ট বা প্রজনন অঙ্গগুলির সাথে একটি সমস্যা নির্দেশ করতে পারে কিছু ক্ষেত্রে অঙ্গের কাছাকাছি পেশী বা জয়েন্টগুলোতে ব্যথা হয় পেলভিক ব্যথা সাধারণত মহিলাদের প্রজনন সিস্টেমের সাথে সম্পর্কিত অবস্থার কারণে ঘটে অন্যান্য সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছে মূত্রনালীর সংক্রমণ অ্যাপেনডিসাইটিস কিডনিতে পাথর ইত্যাদি শ্রোণী ব্যথার সমস্যা পুরুষদের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে বেশি দেখা যায় পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই পেলভিক ব্যথার কারণগুলি হতে পারে মূত্রনালীর সংক্রমণ অ্যাপেনডিসাইটিস (যখন একটি থলির মতো গঠন যা অ্যাপেন্ডিক্স নামে পরিচিত যা বৃহৎ অন্ত্রের শুরুতে সংযুক্ত থাকে স্ফীত এবং বেদনাদায়ক হয়) কিডনিতে পাথর বা কিডনির অন্যান্য সংক্রমণ যৌন রোগে হার্নিয়া ( সম্পর্কে আরও জানুন হার্নিয়া সার্জারি কি কারণ প্রকার পদ্ধতি খরচ) অন্ত্রের ব্যাধি যেমন ডাইভার্টিকুলাইটিস (পাচনতন্ত্রের এক বা একাধিক ছোট থলিতে সংক্রমণ) বা কোলাইটিস (কোলনের ভিতরের আস্তরণের প্রদাহ) শ্রোণীর ব্যাধি যেমন খিঁচুনি এবং শ্রোণীর পেশীর আঁটসাঁটতা ভাঙ্গা পেলভিক হাড় সাইকোজেনিক ব্যথা (ট্রমা বা স্ট্রেস সম্পর্কিত ব্যথা) শুধুমাত্র মহিলাদের মধ্যে পেলভিক ব্যথার কিছু কারণ রয়েছে গর্ভপাত গর্ভাবস্থা ডিম্বস্ফোটন পেলভিক প্রদাহজনিত রোগ (একটি মহিলার প্রজনন অঙ্গের সংক্রমণ) একটোপিক গর্ভাবস্থা (একটি গর্ভাবস্থা যেখানে নিষিক্ত ডিম জরায়ুর বাইরে রোপন করা হয়) ফাইব্রয়েড (জরায়ুতে ক্যান্সারবিহীন বৃদ্ধি) ডিম্বাশয়ের সিস্ট (ডিম্বাশয়ের মধ্যে বা বাইরে তরল ভরা পকেট তৈরি হয়) এন্ডোমেট্রিওসিস (একটি বেদনাদায়ক ব্যাধি যেখানে জরায়ুর আস্তরণের টিস্যু জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায়) জরায়ু ডিম্বাশয় বা জরায়ুর ক্যান্সার পেলভিক ব্যথার ক্ষেত্রে সাধারণত যে লক্ষণগুলি দেখা যায় তা হল মাসিক ব্যাথা মাসিকের ক্র্যাম্প বেদনাদায়ক প্রস্রাব প্রস্রাব করতে অসুবিধা হওয়া যোনিপথে রক্তপাত স্পটিং অত্যধিক যোনি স্রাব কোষ্ঠকাঠিন্য ডায়রিয়া পেট ফাঁপা বা গ্যাস মলে রক্ত জ্বর ঠাণ্ডা বেদনাদায়ক মিলন কুঁচকির অঞ্চলে ব্যথা নিতম্ব অঞ্চলে ব্যথা ডাক্তার প্রথমে রোগীকে শারীরিকভাবে পরীক্ষা করবেন এবং রোগীর লক্ষণ এবং অতীতের চিকিৎসা ইতিহাস নোট করবেন তারপর ডাক্তার পেলভিক ব্যথা নির্ণয় নিশ্চিত করতে নিম্নলিখিত পরীক্ষার সুপারিশ করবেন রক্ত এবং প্রস্রাব পরীক্ষা কোন অন্তর্নিহিত সংক্রমণ পরীক্ষা করার জন্য এগুলি করা হয় গর্ভাবস্থা পরীক্ষা এটি প্রজনন বয়সের মহিলাদের মধ্যে করা হয় এক্সরে পেটের এবং পেলভিক এক্সরে অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির ছবি দেখতে নেওয়া হয় পেনাইল কালচার বা ভ্যাজাইনাল কালচার এগুলি গনোরিয়া এবং ক্ল্যামাইডিয়ার মতো যৌনবাহিত রোগের পরীক্ষা করার জন্য করা হয় এমআরআই স্ক্যান এটি একটি ইমেজিং পরীক্ষা যা চৌম্বকীয় তরঙ্গ ব্যবহার করে অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলিকে স্পষ্টভাবে দেখার জন্য করা হয় হাড়ের ঘনত্ব স্ক্রীনিং এটি হাড়ের শক্তি শনাক্ত করার জন্য নেওয়া একটি বিশেষ ধরনের এক্সরে হিস্টেরোস্কোপি জরায়ুর পরীক্ষার জন্য একটি ডায়াগনস্টিক পদ্ধতি ল্যাপারোস্কোপি একটি পদ্ধতি যেখানে শ্রোণী এবং পেট দেখার জন্য একটি ক্যামেরা সহ একটি পাতলা টিউব পেটে ঢোকানো হয় মল পরীক্ষা একটি মল নমুনা উপস্থিতির জন্য পরীক্ষা করা হয় পেলভিক ব্যথার চিকিৎসা নির্ভর করে পেলভিক ব্যথার কারণ তীব্রতা এবং কতবার ব্যথা হয় তার ওপর বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পদ্ধতি অন্তর্ভুক্ত ওষুধ পেলভিক ব্যথা ওষুধ দিয়ে চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং সংক্রমণের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিক অন্তর্ভুক্ত করতে পারে সার্জারি যদি ব্যথা কোনো পেলভিক অঙ্গের ব্যাধির ফলে হয় তাহলে চিকিৎসায় অস্ত্রোপচার অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে ফিজিওথেরাপি শারীরিক থেরাপি বা ফিজিওথেরাপি কিছু ক্ষেত্রে কার্যকর হতে পারে ডিমেনশিয়া হল একটি যৌগিক শব্দ যা স্মৃতিশক্তি ভাষা সমস্যা সমাধান এবং অন্যান্য চিন্তাভাবনার দক্ষতা হ্রাসের কারণে যে রোগ এবং অবস্থার জন্য ব্যবহৃত হয় যা একজন ব্যক্তির দৈনন্দিন কাজ সম্পাদন করার ক্ষমতাকে প্রভাবিত করে স্মৃতিশক্তি হ্রাস ডিমেনশিয়ার একটি উদাহরণ আলঝেইমার হল ডিমেনশিয়ার সবচেয়ে সাধারণ কারণ এবং এটি এক ধরনের মানসিক অসুস্থতা আল্জ্হেইমার রোগের চিকিৎসা পাওয়া যায় না তবে এর উপসর্গ কমাতে চিকিৎসা করা যেতে পারে ডিমেনশিয়ার বিভিন্ন প্রকার রয়েছে যার মধ্যে রয়েছে আলঝেইমার রোগ এই অবস্থাটি মস্তিষ্কের মৃত কোষে ফলক এবং কোষগুলির মধ্যে জট (উভয় প্রোটিনের অস্বাভাবিকতার কারণে) দ্বারা চিহ্নিত করা হয় আল্জ্হেইমের রোগের সমস্ত কারণ জানা যায় না তবে বিশেষজ্ঞরা বিশ্বাস করেন যে কারণগুলির মধ্যে একটি হল আলঝেইমার রোগের জেনেটিক্স এবং পারিবারিক ইতিহাস আল্জ্হেইমার্সে আক্রান্ত ব্যক্তির মস্তিষ্কের টিস্যুতে ক্রমান্বয়ে কম স্নায়ু কোষ এবং সংযোগ থাকে এবং মোট মস্তিষ্কের আকার সঙ্কুচিত হয় রোগটি স্মৃতিশক্তি হ্রাস দ্বারা চিহ্নিত করা হয় ভাষার ফাংশন হারানো (অ্যাফেসিয়া) বক্তৃতার সময় ঠোঁট চোয়াল এবং জিহ্বার পেশীগুলির অ্যাপ্রাক্সিয়া অথবা ভিজ্যুয়াল এবং ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য ব্যাধিগুলি বক্তৃতা বা নামকরণ (অজ্ঞেয়বাদী) সনাক্ত করা কঠিন করে তোলে ভাস্কুলার অ্যামনেসিয়া মস্তিষ্কে রক্ত ​​সরবরাহকারী রক্তনালীগুলির ক্ষতির ফলে ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া হতে পারে ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া কম ফোকাস এবং ধীর চিন্তার কারণ হতে পারে লুই শরীরের সাথে ডিমেনশিয়া এটি মস্তিষ্কের অস্বাভাবিক কাঠামোর সাথে যুক্ত একটি নিউরোডিজেনারেটিভ অবস্থা এটি একটি সাধারণ ধরনের প্রগতিশীল ডিমেনশিয়া এবং এতে হ্যালুসিনেটিং (বস্তু বা মানুষ না দেখা) মনোযোগের সমস্যা কাঁপুনি অসংলগ্ন নড়াচড়া এবং নমনীয় পেশীর মতো উপসর্গ রয়েছে মিশ্র ডিমেনশিয়া এটি একই সাথে ঘটতে থাকা দুই বা তিন ধরনের ডিমেনশিয়া রোগ নির্ণয়কে বোঝায় উদাহরণস্বরূপ একজন ব্যক্তি একই সময়ে আলঝাইমার রোগ এবং ভাস্কুলার ডিমেনশিয়া উভয়ই দেখাতে পারে ফ্রন্টোটেম্পোরাল অ্যামনেসিয়া এই অবস্থার মধ্যে স্নায়ু কোষের ভাঙ্গন এবং মস্তিষ্কের টেম্পোরাল এবং ফ্রন্টাল লোবের সাথে এই স্নায়ু কোষের সংযোগ অন্তর্ভুক্ত সাধারণত এই অবস্থায় দেখা যায় এমন লক্ষণগুলি একজন ব্যক্তির ব্যক্তিত্ব আচরণ ভাষা গতিবিধি বিচার এবং চিন্তাভাবনাকে প্রভাবিত করে পারকিনসন রোগ এই রোগ এছাড়াও লুই শরীরের উপস্থিতি দ্বারা চিহ্নিত করা হয় পারকিনসন্স ডিজিজকে সাধারণত নড়াচড়ার ব্যাধি হিসাবে বিবেচনা করা হয় তবে এটি ডিমেনশিয়ার লক্ষণও হতে পারে ডিমেনশিয়ার সাধারণ কারণগুলি হল ডিজেনারেটিভ নিউরোপ্যাথি আলঝেইমার রোগ হান্টিংটন এর রোগ পারকিনসন রোগ নির্দিষ্ট ধরণের মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস (একটি রোগ যেখানে ইমিউন সিস্টেম আক্রমণ করে এবং স্নায়ুর প্রতিরক্ষামূলক আস্তরণের ক্ষতি করে মস্তিষ্ক এবং শরীরের মধ্যে যোগাযোগ ব্যাহত করে) উপরের রোগগুলি সাধারণত বয়সের সাথে আরও খারাপ হয় ভাস্কুলার ডিসঅর্ডার এই ব্যাধিগুলি সাধারণত মস্তিষ্কে রক্ত ​​সঞ্চালনকে প্রভাবিত করে এবং এর মধ্যে রয়েছে শরীরের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র (মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ড বা পিছনে) প্রভাবিত সংক্রমণ যেমন এইচআইভি (একটি যৌন সংক্রামিত রোগ) মেনিনজাইটিস (মস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডের প্রদাহ) ক্রুটজফেল্টজ্যাকব রোগ (একটি অবক্ষয়জনিত রোগ) এবং এমনকি মস্তিষ্কের মৃত্যু যা ডিমেনশিয়া হতে পারে অ্যালকোহল বা ওষুধের দীর্ঘায়িত ব্যবহার দুর্ঘটনা বা পড়ে যাওয়ার কারণে মস্তিষ্কে আঘাত বা আঘাত মস্তিষ্কে তরল জমা (হাইড্রোসেফালাস) কিছু শারীরিক এবং জীবনধারার কারণ ডিমেনশিয়া হওয়ার ঝুঁকি বাড়িয়ে দিতে পারে ডিমেনশিয়ার ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছে বয়স ডিমেনশিয়ার পারিবারিক ইতিহাস বিষণ্ণতা ডায়াবেটিস মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস হৃদরোগ স্লিপ অ্যাপনিয়া (একটি ঘুমের ব্যাধি যা হার্টের অবস্থা এবং উচ্চ রক্তচাপের কারণ হতে পারে) এবং ডাউন সিনড্রোম (বৌদ্ধিক অক্ষমতার সাথে সম্পর্কিত একটি জেনেটিক ব্যাধি) মস্তিষ্কে আঘাত ধূমপান ভারী অ্যালকোহল সেবন নিচুমানের খাবার শারীরিক ব্যায়ামের অভাব স্ট্রোক (মস্তিষ্কে রক্ত ​​সরবরাহ বাধাগ্রস্ত হয়ে মস্তিষ্কের ক্ষতি করে) মস্তিষ্কের সংক্রমণ যেমন মেনিনজাইটিস এবং সিফিলিসের ক্ষেত্রে (একটি ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ যা যৌন যোগাযোগের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে) ডিমেনশিয়ার লক্ষণগুলি ব্যাপকভাবে পরিবর্তিত হতে পারে উদাহরণ অন্তর্ভুক্ত স্মৃতিশক্তি হ্রাস কথাবার্তা ও কথাবার্তায় অসুবিধা স্থানিক এবং চাক্ষুষ ক্ষমতায় অসুবিধা যেমন গাড়ি চালানোর সময় পথ হারানো জটিল কাজগুলি পরিচালনা করতে অক্ষমতা সমস্যা এবং যুক্তি সমাধানে অসুবিধা পরিকল্পনা ও সংগঠনে অসুবিধা সমন্বয়ে অসুবিধা বিভ্রান্তি দিশেহারা ব্যক্তিত্বে পরিবর্তন দুশ্চিন্তা বিষণ্ণতা সহজেই উত্তেজিত হওয়া অনুচিত আচরণ হ্যালুসিনেশন প্যারানইয়া (অযৌক্তিক অবিশ্বাস এবং অন্যদের সন্দেহ) ডাক্তার রোগীকে পর্যবেক্ষণ করবেন এবং শারীরিকভাবে পরীক্ষা করবেন চিকিৎসক রোগীর চিকিৎসা ও পারিবারিক ইতিহাস রোগীর লক্ষণসহ নোট করবেন একটি একক পরীক্ষা ডিমেনশিয়া রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করতে পারে না সঠিক সমস্যা নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার সম্ভবত বেশ কয়েকটি পরীক্ষার পরামর্শ দেবেন ল্যাবরেটরি পরীক্ষা রক্ত পরীক্ষা ভিটামিনের অভাব বা থাইরয়েড রোগের মতো সমস্যা সনাক্ত করতে পারে যা মস্তিষ্কের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে স্পাইনাল ফ্লুইড (মেরুদন্ড বা মেরুদন্ডে উপস্থিত তরল) প্রদাহ সংক্রমণ বা নির্দিষ্ট ডিজেনারেটিভ ডিসঅর্ডারের চিহ্নিতকারীর জন্য পরীক্ষা করা যেতে পারে মনস্তাত্ত্বিক মূল্যায়ন একজন মনোবিজ্ঞানী নির্ধারণ করতে পারেন যে বিষণ্নতা বা অন্যান্য মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থা দেখা লক্ষণগুলির জন্য দায়ী কিনা স্নায়বিক মূল্যায়ন ডাক্তাররা রোগীর ভাষা মনোযোগ স্মৃতি চাক্ষুষ উপলব্ধি সমস্যা সমাধানের ক্ষমতা ভারসাম্য ইন্দ্রিয় এবং প্রতিচ্ছবি মূল্যায়ন করেন জ্ঞানীয় এবং নিউরোসাইকোলজিকাল পরীক্ষা ভাষার দক্ষতা স্মৃতিশক্তি অভিযোজন মনোযোগ যুক্তি এবং বিচারের মতো চিন্তার দক্ষতা পরিমাপের জন্য বেশ কয়েকটি পরীক্ষা ব্যবহার করে রোগীর চিন্তা করার ক্ষমতা মূল্যায়ন করা হয় ব্রেন স্ক্যান সিটি স্ক্যান বা এমআরআই স্ক্যান রক্তপাত টিউমার হাইড্রোসেফালাস বা টিউমারের প্রমাণ দেখায় এমন কোনো লক্ষণ আছে কিনা তা পরীক্ষা করার জন্য এই স্ক্যানগুলি করা হয় পিইটি স্ক্যান এই স্ক্যানগুলি মস্তিষ্কের কার্যকলাপের ধরণগুলি দেখায় এবং মস্তিষ্কে অ্যামাইলয়েড বা টাউ প্রোটিন জমার জন্য পরীক্ষা করে এই প্রোটিনের উপস্থিতি আলঝেইমার রোগের উপস্থিতি নির্দেশ করে ডিমেনশিয়ার জন্য এখনও কোন সুনির্দিষ্ট চিকিৎসা নেই তবে ডাক্তার ডিমেনশিয়ার কারণ খুঁজে বের করতে পারেন এবং কারণটির চিকিৎসা করতে পারেন ডিমেনশিয়ার সাথে সম্পর্কিত লক্ষণগুলি নির্দিষ্ট ধরণের চিকিৎসা দ্বারা নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারে ওষুধ কোলিনস্টেরেজ ইনহিবিটরস ডনেপেজিল গ্যালান্টামিন এবং রিভাস্টিগমিনের মতো ওষুধগুলি রাসায়নিক বার্তাবাহকের মাত্রা বাড়াতে সাহায্য করে যা স্মৃতিশক্তি এবং বিচারে সহায়তা করে এই ওষুধগুলি প্রাথমিকভাবে আল্জ্হেইমের রোগের চিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত হয় তবে অন্যান্য ধরণের ডিমেনশিয়ার জন্যও নির্ধারিত হতে পারে এই ওষুধগুলির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হল বমি বমি ভাব বমি ডায়রিয়া ধীর হৃদস্পন্দন ঘুমের ব্যাঘাত এবং মাথা ঘোরা মেম্যান্টাইন মেম্যান্টাইন (নামেন্ডা) গ্লুটামেটের ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে যা একটি রাসায়নিক বার্তাবাহক যা স্মৃতি এবং শেখার মতো মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপ নিয়ন্ত্রণ করে মেম্যান্টিন কখনও কখনও একটি কোলিনেসটেরাস ইনহিবিটরওষুধের সাথে নির্ধারিত হতে পারে মাথা ঘোরা এই ওষুধের সাথে যুক্ত সাধারণ পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া অন্যান্য ওষুধ বিষণ্ণতা হ্যালুসিনেশন পারকিনসন্স ডিজিজ উত্তেজনা এবং ঘুমের ব্যাঘাতের মতো কিছু রোগের চিকিৎসার জন্য ডাক্তার নির্দিষ্ট কিছু ওষুধ দিতে পারেন থেরাপি ডিমেনশিয়ার কিছু উপসর্গ নির্দিষ্ট থেরাপি ব্যবহার করে চিকিৎসা করা যেতে পারে যেমন পেশাগত থেরাপি একজন অকুপেশনাল থেরাপিস্ট শেখাবেন কীভাবে একজন ডিমেনশিয়া রোগীর আচরণ পরিচালনা করতে হয় এবং দুর্ঘটনা প্রতিরোধে বাড়িটিকে নিরাপদ করতে হয় পরিবেশের পরিবর্তন আশেপাশের পরিবেশে গোলমাল এবং গোলমাল কমে যায় একজন ডিমেনশিয়া রোগীকে মনোযোগ দিতে এবং কাজ করতে সাহায্য করার জন্য ছুরির মতো ধারালো ও বিপজ্জনক বস্তু লুকিয়ে রাখা হয় মনিটরিং সিস্টেম ডিমেনশিয়ায় আক্রান্ত ব্যক্তির উপর নজর রাখতে সাহায্য করে কাজগুলো সহজ করা যেকোন কাজকে ধাপে ধাপে বিভক্ত করা ডিমেনশিয়া রোগীর জন্য বোঝা এবং অনুসরণ করা সহজ করে তোলে একটি রুটিন অনুসরণ করা রোগীর জন্যও উপকারী এটি বিভ্রান্তি কমাতে সাহায্য করে ডিমেনশিয়া নিম্নলিখিত জটিলতার কারণ হতে পারে সাধারণ স্বযত্ন কার্য সম্পাদনে অক্ষমতা ডিমেনশিয়া সাধারণত বয়সের সাথে আরও গুরুতর হয়ে ওঠে ডিমেনশিয়া বাড়ার সাথে সাথে একজন ব্যক্তি দাঁত ব্রাশ করা স্নান করা পোশাক পরা চুল আঁচড়ানো একা ওয়াশরুম ব্যবহার করা এবং ওষুধ খাওয়ার মতো সাধারণ কাজগুলি করতে অক্ষম নিরাপত্তা চ্যালেঞ্জ প্রতিদিনের সাধারণ ক্রিয়াকলাপগুলি ডিমেনশিয়ায় ভুগছেন এমন লোকেদের জন্য নিরাপত্তার সমস্যা তৈরি করতে পারে যার মধ্যে রান্না করা হাঁটা এবং গাড়ি চালানোর মতো ক্রিয়াকলাপ রয়েছে খারাপ পুষ্টি ডিমেনশিয়া আক্রান্ত ব্যক্তিরা তাদের পুষ্টির মাত্রাকে প্রভাবিত করে সম্পূর্ণরূপে খাওয়া কমাতে বা বন্ধ করে দেয় এটি খাবার চিবানো এবং গিলতে অক্ষমতার কারণ হতে পারে নিউমোনিয়া গিলতে অসুবিধা হলে ফুসফুসে খাবার শ্বাসরোধ বা আকাঙ্খার ঝুঁকি বাড়তে পারে এটি ব্যক্তির শ্বাসপ্রশ্বাসের ক্ষমতাকে অবরুদ্ধ করতে পারে এবং নিউমোনিয়া হতে পারে ডিমেনশিয়া প্রতিরোধে নিম্নলিখিত কিছু ব্যবস্থা নেওয়া যেতে পারে ধুমপান ত্যাগ কর অ্যালকোহল খাওয়া বন্ধ করুন শারীরিকভাবে সক্রিয় থাকুন সামাজিকভাবে সক্রিয় হন আপনার মনকে ব্যস্ত এবং সক্রিয় রাখুন ভিটামিন খাওয়ার পরিমাণ বাড়ান উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার মতো পূর্ব থেকে বিদ্যমান মানসিক স্বাস্থ্যের অবস্থার চিকিত্সা করুন উচ্চ রক্তচাপ ডায়াবেটিস স্থূলতা এবং উচ্চ কোলেস্টেরলের মতো শারীরিক রোগের চিকিৎসা করুন কনডম কী কনডম অযাচিত গর্ভাবস্থা থেকে রক্ষা করতে ব্যবহৃত হয় এর ব্যবহারের ফলে এইডস এইচআইভি গনোরিয়া সিফিলিসের মতো যৌন রোগের ঝুঁকি হ্রাস পায় আপনি জানেন যে এইডস একটি খুব সংক্রামক রোগ এটি আপনার যৌনাংগে এ ছাড়িয়ে পরে যদিও এইডস নির্মূল করার জন্য কোনও ওষুধ ও চিকিৎসা এখনও পাওয়া যায়নি তাই নিজেকে এই রোগ থেকে রক্ষা করুন এবং কনডম ব্যবহার করুন অনেকে কন্ডোম সম্পর্কে জানেন না বা কীভাবে ব্যবহার করবেন তা না জানেন না কনডম ব্যবহার করে যৌন মিলন কেবল যৌন অসুস্থতা থেকে রক্ষা করে না যৌন আনন্দও অর্জন করতে সাফল করে কনডম হল রাবারের একটি পাতলা টুকরা যা লিঙ্গের উপরে ফিট হয় সঠিকভাবে ব্যবহার করা হলে কনডম এইচআইভি প্রতিরোধের পাশাপাশি গর্ভাবস্থা এবং এসটিআই প্রতিরোধ করে পাতলা ক্ষীর (রাবার) সর্বাধিক জনপ্রিয় যা দিয়ে কনডম তৈরি হয় কনডম আগে ভারতে বেশি ব্যবহৃত হত না পুরুষরা কনডম ব্যবহার শুরু করেছিলেন যখনই তারা রোগগুলি সম্পর্কে জানতে পারেন এটি আপনাকে এবং আপনার সঙ্গীকে যৌন রোগ থেকে রক্ষা করে যে কোনও মেডিকেল শপে আপনি সহজেই কনডম পেতে পারেন পুরুষের কনডমের অনেক ফ্লেবারে পাওয়া যায় যার মধ্যে কলা চকোলেট ভ্যানিলা আপেল স্ট্রবেরি কফি ইত্যাদি রয়েছে অ্যালোভেরা কনডম স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী এটি কনডমের মতো কাজ করে কারণ অ্যালোভেরার কন্ডোমে লুব্রিকেটিং এবং পিচ্ছিল উপাদান রয়েছে যা যৌনতার সময় ব্যথা প্রতিরোধ করে ওয়ার্ম কনডমগুলি আপনাকে আপনার সঙ্গীর যৌন উষ্ণ করতে সহায়তা করে এই কনডমগুলি আপনার সঙ্গীর উত্তেজনা বৃদ্ধি করে আল্ট্রা থিন কনডম পুরুষরা বেশি ব্যবহার করেন কারণ এটি যৌন মিলনের সময় পুরুষদের আনন্দদায়ক অনুভূতি দেয় এটি পাতলা এবং প্রতিটি আকারে উপলব্ধ বিগ হ্যান্ড কনডম সকল পুরুষের জন্য উপযোগী কারণ পুরুষদের লিঙ্গ একই আকারের হয় না এবং বড় লিঙ্গ লোকদের বড় আকারের কনডম ব্যবহার করা উচিত মনে রাখবেন যে মুখটি খুব বেশি বড় যেন না হয় অন্যথায় ফেটে যাওয়ার ঝুঁকি রয়েছে অতিরিক্ত লুব্রিকেটড কনডম তাদের ক্ষেত্রে উপযুক্ত যাদের অংশীদারের যোনি শুকনোতা বেশি কারণ এই কনডমটিতে স্টিকি ও তরল থাকে যা ব্যথা রোধের জন্য কাজ করে ডটস কনডম ছোট ছোট বিন্দু থাকে এটি মহিলাকে অত্যন্ত আনন্দ দেয় এবং যোনিতে মসৃণতা বাড়ায় এর বাইরেও যৌন মিলন খুব পরিপূর্ণ করতে সক্ষম হয় রিবড কনডম এমন একটি কনডম যা কোনও মহিলার উত্তেজনা বাড়াতে কাজ করে আপনি যদি আপনার সঙ্গীর সাথে একটি স্মরণীয় মুহূর্ত কাটাতে চান তবে এই কনডমটি ভাল তৃপ্তি দিতে সক্ষম অস্বচ্ছল কনডম যৌন সুরক্ষার জন্য ব্যবহৃত হয় যাতে আপনি আপনার সঙ্গীকে গর্ভবতী হওয়া থেকে বিরত রাখতে পারেন এবং রোগ প্রতিরোধ করতে পারেন নিম্নলিখিতটি কনডম ব্যবহারের উপায় কনডমটি সাবধানতার সাথে খুলুন এবং সঠিকভাবে কনডমটি যাচাই করে মোড়ক থেকে সরান সোজা শক্ত লিঙ্গের মাথায় কনডম রাখুন যদি সুন্নত না করা হয় তবে প্রথমে ফোরস্কিনটি আবার টানুন কনডমের ডগা থেকে এক চিমটি বায়ু সরান লিঙ্গ টি কন্ডোমে ঢুকিয়ে নিন যৌনতার পরে বাইরে বের করার আগে কনডমটি বেসে ধরে রাখুন তারপরে কনডমটি টানুন এবং সঠিক ভাবে জায়গায় রাখুন কনডম সাবধানে খুলে ফেলুন এবং এটিকে আবর্জনায় ফেলে দিন কনডম ফেটে গেলে গর্ভাবস্থা এড়াতে পাঁচ দিনের মধ্যে পিল্ ব্যবহার করুন কনডমের নিম্নলিখিত সুবিধা রয়েছে যা এইডসএর মতো মারাত্মক রোগ প্রতিরোধ করে কনডম জন্ম নিয়ন্ত্রণ রোধে সহায়তা করে যৌন সংক্রমণ রোধ করে আপনি সহজেই এটি কেমিস্টের দোকানে নিতে পারেন কনডমের বেশি দাম হয় না এবং কনডম পাওয়ার জন্য আপনার কোনও প্রেসক্রিপশন লাগে না কনডম বিভিন্ন স্বাদ এবং আকারে পাওয়া যায় কনডম যৌন আনন্দকে উৎসাহ দেয় এটিতে তৈলাক্ত লুব্রিকেন্ট থাকে কনডমের কোনও পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া নেই তবে ভুল আকার ব্যবহার করলে ফেটে যেতে পারে তাই সঠিক আকারের কনডম ব্যবহার করুন কনডমের অসুবিধাগুলি হলঃ অনেক পুরুষের অভিযোগ কনডম ব্যবহার উত্তেজনা হ্রাস করে এর কারণ হল আপনি সঠিক আকারের কনডম ব্যবহার করেন না কনডম ভুলভাবে ব্যবহারের ফলে কনডম নষ্ট হয়ে যায় এবং ফেটে যায় কিছু পুরুষের মতে কনডম মেজাজ এবং উত্তেজনা হ্রাস করে এবং প্রথম ক্রিয়ায় ফিরে আসে কনডম বীর্যপাত বৃদ্ধি করে এবং আরও বেশি বীর্যপাত পুরুষাঙ্গের অনুপ্রবেশকে হ্রাস করে ল্যাটেক্স অ্যালার্জি হল কনডম ব্যবহার এবং একটি সীমাবদ্ধতা আপনি তেল ব্যবহার করার পরে কনডমের ব্যবহার সঠিক নয় যোনিতে ব্যথা বা অস্বস্তি যা কখনও কখনও পুরো যৌনাঙ্গে প্রসারিত হতে পারে যোনি ব্যথা হিসাবে পরিচিত যোনিপথে ব্যথার কারণে জ্বালাপোড়া চুলকানি বা হুল ফোটানো অনুভূতি হতে পারে লক্ষণগুলি হালকা থেকে গুরুতর হতে পারে এবং যৌন কার্যকলাপ বা নড়াচড়ার সাথে উন্নতি বা খারাপ হতে পারে একা যোনি ব্যথা সাধারণত একটি গুরুতর চিকিৎসা অবস্থা নয় যাইহোক এটি গুরুতর বা জীবনহুমকির অবস্থার লক্ষণগুলির সাথে হতে পারে যোনি ব্যথার বিভিন্ন কারণ হতে পারে আঘাত যৌন নির্যাতন কনডমের এলার্জি প্রতিক্রিয়া ভালভা (মহিলা যৌনাঙ্গের বাইরের অংশ) অঞ্চলে অস্ত্রোপচারের ইতিহাস ভালভার অঞ্চলে স্নায়ুতে জ্বালা ভালভার অঞ্চলে ফুসকুড়ি যৌন রোগে (বিস্তারিত জানুন সেক্সুয়ালি ট্রান্সমিটেড ডিজিজের লক্ষণগুলো কী কী) সাবান ডিটারজেন্ট বা মহিলা স্বাস্থ্যবিধি পণ্যের মতো রাসায়নিক থেকে ত্বকের জ্বালা মেনোপজের পর যোনিপথের শুষ্কতা খামির সংক্রমণ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ ভাইরাল সংক্রমণ মূত্রনালীর সংক্রমণ ভূলবহদিনীয়া (ভুলভা যোনি বা উভয় ক্ষেত্রে দীর্ঘস্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা) ভ্যাজিনিসমাস (যোনি প্রাচীরের অনিচ্ছাকৃত পেশীর খিঁচুনি) এন্ডোমেট্রিওসিস (জরায়ুর আস্তরণের টিস্যু জরায়ু বা গর্ভাশয়ের ভিতরে বৃদ্ধি না করে বাইরে বৃদ্ধি পায়) ডিম্বাশয়ের সিস্ট (ডিম্বাশয়ের অভ্যন্তরে বা উপরিভাগে একটি তরলভরা থলির গঠন যা জরায়ু বা গর্ভের উভয় পাশে উপস্থিত একটি মহিলা প্রজনন অঙ্গ এবং ডিম্বাণু বা ডিম্বার উৎপাদনের জন্য দায়ী) ওভারিয়ান টিউমার (সম্পর্কে আরও জানুন ওভারিয়ান ক্যান্সারের চিকিৎসা কি) লাইকেন প্লানাস (একটি প্রদাহজনক অবস্থা যা ত্বক এবং শ্লেষ্মা ঝিল্লিকে প্রভাবিত করে) জরায়ু ফাইব্রয়েড (একজন মহিলার জরায়ুতে ক্যান্সারবিহীন বৃদ্ধি) (সম্পর্কে আরও জানুন জরায়ু ফাইব্রয়েড কি) প্রল্যাপসড পেলভিক কাঠামো (যখন পেলভিক অঙ্গগুলিকে সমর্থনকারী টিস্যু এবং পেশীগুলি আলগা বা দুর্বল হয়ে যায় যার ফলে এক বা একাধিক পেলভিক অঙ্গ যোনিতে বা বাইরে চলে যায়) পেলভিক (পেটের নীচের অঞ্চল) ট্রমা পেটে (পেটের অঞ্চল) ট্রমা পেলভিক প্রদাহজনিত রোগ (অভ্যন্তরীণ মহিলা প্রজনন অঙ্গগুলির একটি গুরুতর সংক্রমণ) যোনি জরায়ু সার্ভিক্স (জরায়ুর নীচের প্রান্ত) বা অন্যান্য মহিলা প্রজনন অঙ্গের ক্যান্সার (সম্পর্কে আরও জানুন সার্ভিকাল ক্যান্সার কী) ভুলবার ইন্ট্রাএপিথেলিয়াল নিওপ্লাসিয়া (ভালভার ত্বকে একটি প্রিক্যান্সারস পরিবর্তন) কিছু কারণ যোনিপথে ব্যথা হওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিতে পারে এই কারণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে গর্ভাবস্থা মেনোপজের কারণে হরমোনের পরিবর্তন (সম্পর্কে আরও জানুন মহিলাদের মধ্যে হরমোনের ভারসাম্যহীনতা কী) হিস্টেরেক্টমি (জরায়ুর অস্ত্রোপচার অপসারণ) (বিস্তারিত জানুন হিস্টেরেক্টমি কী) স্তন ক্যান্সার চিকিৎসার ইতিহাস স্ট্যাটিন জাতীয় কিছু ওষুধের ব্যবহার (কোলেস্টেরল কমাতে ব্যবহৃত) যোনি শুষ্কতা বয়স বৃদ্ধিঙ যোনি ব্যথার লক্ষণগুলো কী কী (What are the symptoms of Vaginal Pain in Bengali) যোনি ব্যথার লক্ষণগুলির মধ্যে অন্তর্ভুক্ত থাকতে পারে জ্বলন্ত রক্তপাত চুলকানি থ্রোবিং কাঁচা সংবেদন যোনি স্রাব যোনি শুষ্কতা নোংরা গন্ধ যৌন উত্তেজনা হ্রাস হেমাটুরিয়া (রক্তাক্ত বা গোলাপী রঙের প্রস্রাব) (বিস্তারিত জানুন প্রস্রাবে রক্ত ​​কী (হেমাটুরিয়া)) জ্বর ঠাণ্ডা বেদনাদায়ক প্রস্রাব ডিসুরিয়া (প্রস্রাব করার সময় জ্বালাপোড়া) বন্ধ্যাত্ব খিঁচুনি বা অসাড়তা (বিস্তারিত জানুন হাত ও পায়ে ঝনঝন হওয়ার কারণ কী) সহবাসের সময় ব্যথা ফুসকুড়ি নিম্নলিখিত উপায়ে নির্ণয় করা যায়ঃ শারীরিক পরীক্ষা রোগীর শারীরিক স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা হয় রোগীর চিকিৎসা ইতিহাস যৌন ইতিহাস এবং রোগীর পারিবারিক ইতিহাস সহ রোগীর লক্ষণগুলি উল্লেখ করা হয় শ্রোণী পরীক্ষা বাহ্যিক যৌনাঙ্গ এবং যোনি সংক্রমণের লক্ষণগুলি পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তার দ্বারা পরীক্ষা করা হয় অভ্যন্তরীণ মহিলা প্রজনন অঙ্গগুলি পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তার তার গ্লাভড এবং লুব্রিকেটেড আঙুল যোনিতে ঢোকাতে পারেন সংক্রমণ পরীক্ষা করার জন্য সোয়াব খামির সংক্রমণ বা ব্যাকটেরিয়া ভ্যাজিনোসিসের মতো সংক্রমণ পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তার যোনি থেকে কোষের নমুনা নিতে পারেন তুলা সোয়াব পরীক্ষা যোনি অঞ্চলে স্থানীয় নির্দিষ্ট ব্যথার জায়গা পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তার দ্বারা একটি আর্দ্র তুলো সোয়াব ব্যবহার করা হয় বায়োপসি ডাক্তার সন্দেহভাজন টিস্যু ক্ষতের একটি নমুনা সরিয়ে ফেলেন এবং আরও মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষাগারে পাঠান ডাক্তার অবস্থার অন্তর্নিহিত কারণ অনুযায়ী যোনি ব্যথার চিকিৎসা করবেন বিভিন্ন চিকিৎসারত পদ্ধতির অন্তর্ভুক্ত হতে পারে ওষুধ ব্যাকটেরিয়া বা ছত্রাক সংক্রমণের ক্ষেত্রে ডাক্তার এটির চিকিৎসার জন্য অ্যান্টিবায়োটিক বা অ্যান্টিফাঙ্গাল ওষুধ লিখে দিতে পারেন লিডোকেন জেলের মতো টপিকাল মলম যৌন মিলনের সময় যোনি অঞ্চলকে অসাড় করার জন্য সহবাসের সময় ব্যথা এবং অস্বস্তি থেকে মুক্তি দিতে প্রয়োগ করা যেতে পারে টপিক্যাল স্টেরয়েড ক্রিমগুলি জ্বালা জ্বালা এবং ফোলা কমাতে সুপারিশ করা যেতে পারে অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্ট বা ট্রাইসাইক্লিক অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট দীর্ঘস্থায়ী বা দীর্ঘমেয়াদী ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে চেতনানাশক ইনজেকশন এবং নার্ভ ব্লক কিছু কিছু ক্ষেত্রে ডাক্তার হয় চেতনানাশক ইনজেকশন বা নার্ভ ব্লকগুলিকে যোনিপথের অংশটিকে মৃত বা অসাড় করার পরামর্শ দিতে পারেন সার্জারি ভালভোডাইনিয়া ভালভার ভেস্টিবুলাইটিস (ভেস্টিবুলে ব্যথা যা যোনি খোলার চারপাশে ভালভার অংশ) বা জরায়ুর ক্যান্সারের চিকিৎসার জন্যও একটি অস্ত্রোপচারের সুপারিশ করা যেতে পারে একটি ভেস্টিবুলেকটোমি হল একটি অস্ত্রোপচার পদ্ধতি যা রোগীর ব্যথা অনুভব করে এমন এলাকার টিস্যু অপসারণের জন্য করা হয় যদি চিকিৎসা না করা হয় তবে যোনিপথে ব্যথা নিম্নলিখিত জটিলতার কারণ হতে পারে বন্ধ্যাত্ব ফোড়া (পুঁজ) গঠন দরিদ্র জীবন মানের সেপসিস (একটি জীবনহুমকি ব্যাকটেরিয়া রক্তের সংক্রমণ) যৌন কর্মহীনতা ক্যান্সারের বিস্তার সংক্রমণের বিস্তার যৌনবাহিত রোগের সংক্রমণ দুশ্চিন্তা বিষণ্ণতা পরিবর্তিত শরীরের চিত্র সম্পর্কের ঝামেলা নিম্নলিখিত টিপস দ্বারা যোনি ব্যথা প্রতিরোধ করা যেতে পারে সুরক্ষিত যৌনতা আছে যোনির ভিতরে কোনো পণ্য ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন ডুচিং এড়িয়ে চলুন (যোনির ভিতরে ধোয়া বা পরিষ্কার করা) যোনি অঞ্চলের শেভিং এড়িয়ে চলুন যদি এটি জ্বালা সৃষ্টি করে যোনির বাইরে হালকা সুগন্ধিমুক্ত সাবান ব্যবহার করুন টাইটফিটিং অন্তর্বাস পরা এড়িয়ে চলুন ডিওডোরেন্ট প্যাড বা ট্যাম্পন ব্যবহার এড়িয়ে চলুন ঘোড়ায় চড়া বা বাইক চালানোর মতো যোনিতে চাপ সৃষ্টি করতে পারে এমন কার্যকলাপগুলি এড়িয়ে চলুন সেক্স করার আগে একটি লুব্রিকেন্ট প্রয়োগ করুন গরম স্নান এবং গরম টবে ভিজানো এড়িয়ে চলুন কোনো জ্বালাপোড়ার ক্ষেত্রে বাহ্যিক যৌনাঙ্গে একটি ঠান্ডা সংকোচ প্রয়োগ করুন দিনে দুই থেকে তিনবার সিটজ বাথ (উষ্ণ জলে বসুন) ভিজিয়ে রাখুন যৌন শিক্ষা নিয়ে কথা বলা এখনও নিষিদ্ধ বলে বিবেচিত হয় তবে যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সবারই জানা প্রয়োজন যৌন শিক্ষা একজন ব্যক্তিকে দায়িত্ব যৌন ক্রিয়াকলাপ সঠিক বয়স উর্বরতা জন্মনিয়ন্ত্রণ যৌন পরিহার ইত্যাদি সম্পর্কে শেখায় আজকাল মানুষ স্কুল এবং পাবলিক প্রোগ্রামের মাধ্যমে যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সচেতনতা পাচ্ছে আগের সময়ের কথা যদি বলা হলে এসব বিষয়ে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হতো না এছাড়াও বিয়ের আগে কেউ এ নিয়ে কথা বলতে পছন্দ করেননি কেউ এ বিষয়ে কথা বলতে চাইলে সমাজ তাকে ভুল বলে মনে করত যৌন শিক্ষা নিয়ে অনেক বিতর্ক ছিল কিন্তু আজ সবাই তাদের স্বাস্থ্যের জন্য দায়ী হয়ে উঠেছে তাই তারা নিজেদের সচেতন রাখে গ্রাম ও শহরের নারী ও পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে শিক্ষিত করা হচ্ছে যাতে যৌন রোগ এবং সংক্রমণ যেমন এইচআইভিএইডস ইত্যাদি প্রতিরোধ করা যায় শিশু এবং কিশোরকিশোরীদের যৌন শিক্ষা গ্রহণ করা উচিত যাতে যৌন সংক্রামিত রোগের ঝুঁকি এবং অবাঞ্ছিত গর্ভাবস্থা প্রতিরোধ করা যায় যৌন স্বাস্থ্য হল একজনের যৌনতা সম্পর্কিত মানসিক মানসিক শারীরিক এবং সামাজিক সুস্থতার একটি অবস্থা এটি শুধুমাত্র একটি রোগ বা ব্যাধির অনুপস্থিতি নির্দেশ করে না ভাল যৌন স্বাস্থ্যের জন্য একজনের যৌনতা সেইসাথে একজনের যৌন সম্পর্কের জন্য একটি দায়িত্বশীল এবং ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি প্রয়োজন এবং সেইসাথে কোনো হিংসা বা বৈষম্য ছাড়াই নিরাপদ এবং আনন্দদায়ক যৌন অভিজ্ঞতার প্রয়োজন নিম্নলিখিত উপশিরোনামের অধীনে এটি আরও ব্যাখ্যা করা যেতে পারে মহিলাদের যৌন স্বাস্থ্য নারীদের তাদের যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে শিক্ষিত হতে হবে এবং তাদের যৌন অঙ্গ সম্পর্কেও সচেতন হতে হবে যোনি – যোনি হল মহিলাদের যৌনাঙ্গের ভিতরের অংশ এটি জরায়ুর সাথে সংযুক্ত থাকে এবং এখানে মিলন হয় এই জায়গা থেকেই ঋতুস্রাব ও সন্তান প্রসব হয় (সম্পর্কে আরও জানুন ভ্যাজিনোপ্লাস্টি কী) স্তন – স্তন মহিলাদের বুকের প্রধান অংশ এতে ফ্যাটি টিস্যু এবং স্তনবৃন্ত রয়েছে মহিলাদের স্তন বয়ঃসন্ধিকালে বিকশিত হয় এবং প্রসবের পরে ল্যাকটেট হয় একজন মহিলার তুলনায় একজন পুরুষের বুক কম বিকশিত হয় জরায়ু – জরায়ু মহিলার তলপেটের অঞ্চলে অবস্থিত এটি একটি নাশপাতি আকৃতি এবং একটি বন্ধ মুষ্টি আকার আছে এটি যোনি এবং ফ্যালোপিয়ান টিউবের শেষের সাথে সংযুক্ত থাকে এই জায়গায় ভ্রূণ বিকশিত হয় এছাড়া জরায়ুতে ঋতুস্রাবের স্তর তৈরি হয় এবং মাসিক চক্রের সময় প্রতি মাসে রক্ত ​​বের হয় (বিস্তারিত জানুন সি সেকশন ডেলিভারি কি) ভগাঙ্কুর – এটি মহিলা প্রজনন সিস্টেমের একটি বাহ্যিক অঙ্গ ভগাঙ্কুরটি ঠোঁটের মতো আকৃতির এবং যৌনাঙ্গে উপস্থিত থাকে যা যোনিকে লুব্রিকেট করতে সাহায্য করে হাইমেন – হাইমেন হল মহিলাদের যোনির মধ্যে একটি ঝিল্লির মতো এই ঝিল্লি মহিলাদের যোনিপথ সংকুচিত করে কখনও কখনও এই ঝিল্লি যৌনমিলনের মাধ্যমে মহিলাদের মধ্যে ভেঙে যায় ডিম্বাশয় – ডিম্বাশয় মহিলা প্রজনন সিস্টেমের একটি অংশ যা একটি ডিম গঠনের জন্য দায়ী যখন এই ডিম্বাণুটি শুক্রাণু দ্বারা নিষিক্ত হয় (সঙ্গমের সময় একজন পুরুষের শরীর থেকে) এটি গর্ভাবস্থায় পরিণত হয় ( সম্পর্কে আরও জানুন ওভারিয়ান সিস্ট রিমুভাল সার্জারি কি) পুরুষদের যৌন স্বাস্থ্য পুরুষদের যৌন অঙ্গ এবং রোগ সম্পর্কিত তথ্য নিম্নরূপ লিঙ্গ – পুরুষের প্রজনন অঙ্গকে লিঙ্গ বলা হয় এই অঙ্গটি নরম টিস্যু দিয়ে গঠিত যখন এই টিস্যু উত্তেজিত হয় তখন রক্ত ​​এতে পূর্ণ হয় প্রস্রাব তরল এবং বীর্য সবই লিঙ্গ থেকে যায় পুরুষের যৌনাঙ্গে উত্তেজনা – পুরুষের যৌনাঙ্গে উত্তেজনার কারণে লিঙ্গ বড় হয়ে যায় এবং তাতে রক্ত ​​ভরে যায় বীর্যপাত – যৌন ক্রিয়াকলাপের পরে বীর্য নির্গত হওয়ার প্রক্রিয়াটিকে বীর্যপাত বলে (বিষয়ে আরও জানুন বেদনাদায়ক বীর্যপাত কী) খৎনা – পুরুষের লিঙ্গের উপরের চামড়া সম্পূর্ণরূপে অপসারণ করা হয় এটি বহু বছর ধরে কিছু ধর্মীয় বিশ্বাসের কারণে সঞ্চালিত একটি অনুশীলন এই পদ্ধতিটি মূত্রনালীর সংক্রমণের সম্ভাবনা কমিয়ে দেয় (সম্পর্কে আরও জানুন খৎনা সার্জারি কি) বীর্য – এটি একটি সাদা রঙের তরল যা পুরুষের যৌনাঙ্গ থেকে বের হয় এতে শুক্রাণু ও তরল থাকে এই পদার্থটি পুরুষের প্রোস্টেট গ্রন্থি থেকে বেরিয়ে আসে পুরুষের উদ্দীপনায় এই পদার্থটি নির্গত হয় কিছু বিজ্ঞানীদের মতে একজন পুরুষের গড় শুক্রাণুর সংখ্যা 15 থেকে 200 মিলিয়ন প্রতি মিলিলিটার বীর্য ক্ষরণ হয় অণ্ডকোষ – অণ্ডকোষ পুরুষদের যৌনাঙ্গের একটি প্রধান অংশ অন্ডকোষ লিঙ্গের নীচে থাকে লিঙ্গের উভয় পাশে একটি এটিকে স্ক্রোটাল স্যাকও বলা হয় যা পুরুষ হরমোন তৈরি করে অণ্ডকোষ অনেক ছোট স্নায়ুর সাথে যুক্ত অণ্ডকোষ শুক্রাণু এবং পুরুষ যৌন হরমোন টেস্টোস্টেরন উৎপাদন করে (সম্পর্কে আরও জানুন ভ্যাসেকটমি কী) টেস্টিকুলার ক্যান্সার অন্ডকোষের ক্যান্সারকে টেস্টিকুলার ক্যান্সার বলে এই ক্যান্সার ৪০ বছর বয়সের পরে পুরুষদের মধ্যে দেখা যায় তবে এটি একটি বিরল অবস্থা যৌন রোগ প্রতিরোধে গাইনোকোলজিস্টদের দেওয়া কিছু পরামর্শ হল স্তন পরীক্ষা স্তনে কোনো ব্যথা বা অস্বস্তি হলে স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি এড়াতে স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ আপনার স্তন পরীক্ষা করাবেন প্যাপ স্মিয়ার পরীক্ষা জরায়ু বা জরায়ুর ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য এই পরীক্ষার পরামর্শ দেওয়া হয় সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি সংক্রমণের ঝুঁকি এড়াতে যে কোনও বিদেশী পণ্য দিয়ে যোনি এবং মলদ্বার ধোয়ার আগে অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিত ম্যামোগ্রাম স্তন ক্যান্সার নির্ণয়ের জন্য ডাক্তার একটি ম্যামোগ্রামের পদ্ধতি সম্পাদন করেন পুরুষদের মধ্যে যৌন রোগ প্রতিরোধের জন্য ডাক্তার দ্বারা সাধারণত প্রদত্ত কিছু পরামর্শের মধ্যে রয়েছে কনডমের ব্যবহার অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ এবং যৌনবাহিত রোগ (STDs) প্রতিরোধ করতে কনডম ব্যবহার করে পুরুষদের নিরাপদ যৌন অভ্যাস করা উচিত সাধারণ স্বাস্থ্যবিধি সংক্রমণের সম্ভাবনা এড়াতে যৌনাঙ্গ পরিষ্কার রাখতে হবে স্কুলে যৌন শিক্ষা স্কুলে যৌন শিক্ষা সাধারণত ৭তম থেকে ১২তম শ্রেণী পর্যন্ত শিশুদের দেওয়া হয় যৌন শিক্ষা কীভাবে শেখানো উচিত তা নিয়ে অনেক আইন প্রণয়ন করা হয়েছে ভারতের বেশিরভাগ অঞ্চলে স্কুলগুলি যৌন শিক্ষার জন্য আয়োজিত ক্লাসে তাদের সন্তানের অংশগ্রহণের বিষয়ে পিতামাতার সম্মতি চায় বেশিরভাগ পরিবার শিশুদের মধ্যে যৌন শিক্ষার গুরুত্ব উপলব্ধি করে এবং স্কুলে যৌন শিক্ষা কার্যক্রমের ধারণাকে সমর্থন করে স্কুলে যৌন শিক্ষা কার্যক্রমে নিম্নলিখিত দিকগুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত যৌন শিক্ষা সুপ্রশিক্ষিত শিক্ষক ও কর্মীদের দ্বারা শেখানো উচিত স্কুল এমনকি যৌন শিক্ষার ক্লাস পরিচালনার জন্য যৌন পরামর্শদাতাদের ডাকতে পারে যৌন শিক্ষার বিষয়টি শিশুদের জন্য বয়সউপযুক্ত এবং আকর্ষক পদ্ধতিতে আলোচনা করা উচিত শিক্ষার্থীদের যৌনসম্পর্কিত সমস্ত প্রশ্নের সমাধানের জন্য প্রোগ্রামটিতে প্রশ্নউত্তর সেশন অন্তর্ভুক্ত করা উচিত প্রোগ্রামে সমকামী উভকামী এবং ট্রান্সজেন্ডারদের মতো বিভিন্ন যৌন অভিমুখী ব্যক্তিদের সম্পর্কে বিশদ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত শিক্ষার্থীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী এবং স্বাস্থ্যসেবা পরিষেবাগুলির সাথে সংযোগ স্থাপনের জন্য যোগাযোগের বিশদ এবং লিঙ্কগুলি প্রদান করা উচিত যা তাদের যৌন স্বাস্থ্য এবং কার্যকলাপের বিষয়ে নির্দেশিকা প্রদান করে প্রোগ্রামটিতে প্রজনন অঙ্গ এবং সাধারণ যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে বাস্তব বিবরণ অন্তর্ভুক্ত করা উচিত প্রোগ্রামটিতে উর্বরতা যৌন সংক্রামিত রোগ যৌন অভিমুখীতা এইচআইভি/এইডস গর্ভনিরোধ গর্ভাবস্থা গর্ভপাত এবং দত্তক নেওয়ার মতো বিষয়গুলি অন্তর্ভুক্ত করা উচিত স্কুলগুলিতে যৌন শিক্ষার প্রাথমিক ফোকাস হল শিশুকে কিশোরী গর্ভাবস্থা এবং STDএর মতো যৌন স্বাস্থ্য সমস্যা সম্পর্কে সচেতন করা অভিভাবক শিক্ষক এবং পরামর্শদাতাদের সহযোগিতায় এই ধরনের প্রোগ্রাম পরিচালনা করা গুরুত্বপূর্ণ স্কুলে যৌন স্বাস্থ্য শিক্ষা কার্যক্রম নিম্নলিখিত উপায়ে শিক্ষার্থীদের উপকৃত করে এই ধরনের প্রোগ্রাম প্রথম যৌন মিলনের বয়স বিলম্বিত করতে সাহায্য করে যৌন শিক্ষা শিক্ষার্থীদের অরক্ষিত যৌনতার অসুবিধা সম্পর্কে জ্ঞান অর্জনে সহায়তা করে এবং নিরাপদ যৌন মিলনে উৎসাহিত করে যৌন শিক্ষা কার্যক্রমের অংশ হওয়ার পরে একজন ব্যক্তির কম যৌন অংশীদার থাকার একটি উচ্চ সম্ভাবনা রয়েছে এই ধরনের প্রোগ্রাম যৌন ক্রিয়াকলাপের সময় সুরক্ষা ব্যবহারকে উৎসাহিত করে যেমন কনডম ব্যবহার সবশেষে যৌন স্বাস্থ্য প্রোগ্রামগুলি তরুণ শিক্ষার্থীদের অনুসন্ধিৎসু মনের মধ্যে বেশ কিছু প্রশ্নের সমাধান করতে সাহায্য করে এবং এমনকি তাদের সামগ্রিক বিকাশ এবং একাডেমিক বৃদ্ধির উন্নতি করতে পারে শিশুর অল্প বয়সেই যৌন স্বাস্থ্য সম্পর্কে সঠিক তথ্য পাওয়া অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ঘরে বসে যৌন শিক্ষা পাওয়ার কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুবিধা হল বাড়িতে সঠিক ধরনের যৌন শিক্ষা শিশুকে তাদের বন্ধু এলোমেলো মানুষ বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে বাইরে থেকে ভুল তথ্য সংগ্রহ করার পরিবর্তে তাদের সমস্ত প্রশ্ন পরিষ্কার করতে উৎসাহিত করবে এটি একটি ভুল ধারণা যে পিতামাতার দ্বারা যৌন শিক্ষা শিশুদের সাথে বিশ্রীতার দিকে নিয়ে যেতে পারে বিপরীতে একই বিষয়ে একটি খোলা আলোচনা শুধুমাত্র পিতামাতা এবং সন্তানের মধ্যে বন্ধনকে শক্তিশালী করবে প্রতিটি শিশুর যৌনতা এবং যৌন মিলন সম্পর্কে একটি নির্দিষ্ট স্তরের অনুসন্ধিৎসা রয়েছে বাড়িতে অল্প বয়সে এই বিষয়ে সঠিক তথ্য প্রদান করা অবাঞ্ছিত গর্ভধারণ প্রতিরোধে সাহায্য করবে এবং ভবিষ্যতে এইচআইভি এইডস হারপিস ইত্যাদির মতো যৌন সংক্রামিত রোগ (এসটিডি) হওয়ার ঝুঁকি কমাতে সাহায্য করবে শিশুকে সাধারণভাবে প্রজনন ব্যবস্থা এবং যৌন স্বাস্থ্য বোঝার জন্য অভিভাবকরা বয়সউপযুক্ত এবং শিশুবান্ধব ভাষা ব্যবহার করতে পারেন সকল পিতামাতার জন্য তাদের সন্তানদেরকে অল্প বয়সে যৌন সম্পর্কে শিক্ষিত করা বাঞ্ছনীয় যা একটি শিশুর শিক্ষার দিকে প্রথম ধাপ করোনা মহামারি আমাদের জীবনের সর্বক্ষেত্রে প্রভাব ফেলেছে আর সেটা থেকে বাদ যায়নি আমাদের মানসিক স্বাস্থ্য করোনা নতুনভাবে অনেককে অবসাদগ্রস্ত করেছে আর খারাপ করে দিয়েছে অতীতে এই মানসিক সমস্যায় ভোগা ব্যক্তিদের পরিস্থিতিও মহামারির মধ্যে প্রিয়জন হারানো সামাজিকভাবে দূরে থাকা আর অনিশ্চিত ভবিষ্যতের কারণে মানুষ এই পরিস্থিতির মুখোমুখি হচ্ছে করোনা পরবর্তী অবসাদ নিয়ন্ত্রণে বা দূরীকরণে ব্যক্তিপর্যায় থেকে নেওয়া যায় বিভিন্ন পদক্ষেপ এগুলো হয়তো রাতারাতি আপনার অবস্থা বদলে দেবে না তবে কিছুটা স্বস্তি দিতে পারে সারাক্ষণ সঙ্কটময় পরিস্থিতি নিয়ে না ভেবে অর্থাৎ ক্রাইসিস মুডে না থেকে পরিস্থিতিতে স্বাভাবিক হিসাবে দেখা চেষ্টা করুন মনোবিজ্ঞানীগণ মনে করেন এটা যেকোনো জরুরি অবস্থা থেকে মুক্তির প্রাথমিক পদক্ষেপ যতটুকু সম্ভব নিয়মিত রুটিনে ফিরে যান গণমাধ্যমের খবরাখবর আর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমের পেছনে কম সময় দিন ব্যায়াম করার মাধ্যমে শারীরিকভাবে সক্রিয় হওয়ার চেষ্টা করুন সঠিক সুষম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাবার খান পর্যাপ্ত ঘুমানোর চেষ্টা করুন পরিবার ও বন্ধুদের সাথে বেশি করে সময় কাটান তাদের সাথে বেশি পরিমাণে মেশার চেষ্টা করুন সমস্যা জটিলতর মনে হলে মনোবিদের পরামর্শ নিন সবথেকে বড়ো কথা হলো নিজের ভালো থাকাটা জরুরি আর মানসিক স্বাস্থের দিকে নজর না দিয়ে কেউ চাইলেও ভালো থাকতে পারবে না তাই বেঁচে থাকার তাগিদে কিংবা প্রিয়জনের কথা মাথায় রেখে হলেও এই অবসাদ থেকে বের হয়ে আসার চেষ্টা করুন প্রয়োজনে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হন করোনা মহামারির মাঝে মানসিক অবসাদগ্রস্ত হওয়াটা কোনো অস্বাভাবিক বিষয় নয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্যমতে করোনা পরবর্তী জীবনে বিশ্বের প্রায় ২৬ কোটি মানুষ অবসাদে ভুগছেন অবসাদ ব্যক্তিগত পর্যায় থেকে নিয়ন্ত্রিত না হয়ে গুরুতর হলে মনোবিদ আর মনোচিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া যেতে পারে এতে লজ্জা বা দ্বিধার কিছু নেই আমাদের শরীর খারাপ হলে বা রোগাক্রান্ত হলে যেমন আমরা ডাক্তারের শরণাপন্ন হই তেমনিই মানসিক যেকোনো সমস্যাতেই মানসিক ডাক্তার বা মনোবিদের কাছে যাওয়া একেবারেই স্বাভাবিক বিষয় অন্যান্য ডাক্তারের মতই মনোবিদ বা মনোচিকিৎসকেরাও ওষুধের প্রয়োগ এবং সাইকোথেরাপির মাধ্যমে (পৃথকভাবে কিংবা একইসাথে) মানসিক অবসাদের চিকিৎসা করে থাকেন ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসার পাশাপাশি কগনিটিভ বিহ্যাভিওরাল থেরাপি ফ্যামিলি থেরাপি আর ইন্টারপার্সোনাল থেরাপি দিয়ে থাকেন থেরাপিস্টরা নিচের কারণগুলোর কোনোটি আপনার মধ্যে প্রকট হলে মনোবিদ বা মনোচিকিৎসকের শরণান্ন হতে পারেন– অনবরত দুঃখ ও শূন্যতা অনুভব করলে স্বাভাবিকের চেয়ে অতি কম বা অতি বেশি মাত্রার ঘুম হলে স্বাভাবিকের চেয়ে অতি কম বা অতি বেশি মাত্রায় খাওয়ার প্রবণতা দেখা দিলে অকারণে উত্তেজিত হয়ে পড়লে শারীরিক শক্তির অভাব প্রবলভাবে অনুভব করলে অতিমাত্রায় বিরক্ত ও হতাশ বোধ করলে আগে যে কাজে আনন্দ পেতেন এখন তাতে পুরোপুরি আগ্রহ হারিয়ে ফেললে মনোসংযোগে বেশিমাত্রায় অসাড়তা দেখা দিলে আত্মহত্যার চিন্তা মাথায় ঘুরতে থাকলে যেসব প্রতিষ্ঠানে মানসিক সমস্যার জন্য পরামর্শ নিতে পারেন– স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের স্বাস্থ্য বাতায়ন নম্বর–১৬২৬৩ ব্র্যাক সাইকোলজিক্যাল হেলথ অ্যান্ড ওয়েলনেস ক্লিনিক (পিএইচডব্লিউসি) এবং মানসিক সহায়তা হেল্পলাইন কান পেতে রইএর টেলিকাউন্সেলিং প্ল্যাটফর্ম নম্বর–০১৭০৯৮১৭১৭৯ প্রতিদিন সকাল ৮টা থেকে রাত ১২টা পর্যন্ত বাংলাদেশ রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির মনঃসামাজিক সহায়তা সেল নম্বর–০১৮১১৪৫৮৫৪১ ০১৮১১৪৫৮৫৪২ রোববার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত সকাল ৯টা থেকে বিকেল ৫টা বর্তমান সময়ে দুশ্চিন্তা ও উদ্বেগজনিত মানসিক সমস্যা সারা বিশ্বে প্রকটভাবে দেখা দিয়েছে শুধুমাত্র আমেরিকাতেই প্রায় ৪০ মিলিয়ন মানুষ এই দুশ্চিন্তাজনিত রোগ বা anxietyতে ভুগছেন বাংলাদেশেও এর সংখ্যা নেহাতই কম নয় বাংলাদেশের জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইন্সটিটিউটের হিসেব মতে ১৮ বছর এবং এর চেয়ে অধিক বয়সি মানুষের প্রায় ১৮৭ এবং ৬০ ও তার অধিক বয়সি মানুষের প্রায় ২০২ মানসিক স্বাস্থ্যজনিত সমস্যায় আক্রান্ত দীর্ঘদিন এই রোগে আক্রান্ত হয়ে থাকলে ডক্টরের পরামর্শ অনুযায়ী নিয়মিত এবং পরিমিত ওষুধ সেবনের পাশাপাশি গাইডেড মেডিটেশন করা যেতে পারে তবে আশ্চর্যের বিষয় হলো এমন কিছু খাবার আছে যেগুলো আপনার এই মানসিক দুশ্চিন্তাজনিত সমস্যাকে আরো বাড়িয়ে দিতে পারে আসুন জেনে নেই কোন সেই ৪টি খাবার যেগুলো আপনার এনজাইটিজনিত সমস্যায় এড়িয়ে চলা উচিত ১ অ্যালকোহল বা মদজাতীয় নেশাদ্রব্য সাময়িক প্রশান্তি ও উৎকর্ষতার জন্য গ্রহণ করা এই অ্যালকোহল বা মদই উলটো আমাদের এনজাইটি বা দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে দিতে পারে মদ আমাদের শরীরে ঘুমের ব্যাঘাত এবং ডিহাইড্রেশন অর্থাৎ পানিস্বল্পতা ঘটায় যা কি না এই এনাজাইটি বা উদ্বিগ্নতাকে ট্রিগার করতে পারে এছাড়া মদ মস্তিষ্কের সেরোটেনিন নামক একটি হরমোন এবং নিউরনের সংবেদনশীলতাকে প্রভাবিত করে যা আরেকটি কারণ হতে পারে শরীরে দুশ্চিন্তা বাড়িয়ে তোলার একারণে অনেকে মদের নেশা কেটে যাওয়ার পর আরও তীব্রভাবে এনজাইটিজনিত সমস্যা অনুভব করে থাকেন ২ ক্যাফেইন সকালে ঘুম থেকে উঠেই এক কাপ গরম গরম কফি খেতে অনেকেই খুবই পছন্দ করেন কিন্তু এই কফিতে বিদ্যমান ক্যাফেইন আমাদের শরীরে এনজাইটিজনিত সমস্যা বাড়িয়ে দিতে পারে এমনকি ক্যাফেইন মস্তিষ্কে নিঃসৃত হওয়া হ্যাপি হরমোন সেরোটোনিনের পরিমাণ কমিয়ে দেওয়ার মাধ্যমেও বিষণ্ণতা বাড়িয়ে দিতে পারে পরিমিত মাত্রায় ক্যাফেইন সেবন এজন্য খুবই জরুরি দিনে ৪০ মিলিগ্রাম পর্যন্ত ক্যাফেইন গ্রহণ শরীরে কোনো সমস্যা তৈরি করে না বলে জানিয়েছে FDA ( The food & drug administration) এজন্য কফি এবং ক্যাফেইন বিদ্যমান আছে এমন খাবার যেমন চা চকোলেট ও বিভিন্ন মাথাব্যথার ওষুধ সেবনে সচেতনতা বজায় রাখতে হবে ৩ Added Sugar বা পরোক্ষভাবে চিনি মিশ্রিত খাবারসমূহ খাবারকে শতভাগ চিনিমুক্ত রাখা আমাদের পক্ষে প্রায় অসম্ভব কেননা প্রাকৃতিকভাবেই অনেক খাবার এবং প্রায় সকল ফলেই চিনি মিশ্রিত থাকে তবে আসল সমস্যা হয় সেসব চিনিমিশ্রিত খাবারসমূহে যেগুলোকে প্রত্যক্ষভাবে মনে হয় চিনিবিহীন কারণ যেহেতু আমরা জানি না সেগুলোতে চিনি মেশানো আছে–আমরা না বুঝেই অনেক বেশি পরিমাণ চিনি গ্রহণ করে ফেলি যেমন টমেটো সস পাস্তা সস কর্ন ফ্লেকস ইত্যাদি এই চিনি শরীরে রক্ত চলাচল হুট করে বাড়িয়ে দেয় এবং তাৎক্ষণিক শক্তি প্রদান করে যা কিছুক্ষণ স্থায়ী হওয়ার পর চলে যায় তখন আমরা আবার বিষণ্ণ ও আলসে অনুভব করতে শুরু করি যা আমাদের এনজাইটি পরোক্ষভাবে বাড়িয়ে দিতে পারে এজন্য এ সমস্ত খাবার যতটা সম্ভব আমাদের এগুলো এড়িয়ে চলার চেষ্টা করা উচিত ৪ রিফাইনড কার্বস বা প্রক্রিয়াজাত শর্করা শস্যদানাকে কয়েকধাপ পরিশোধনের মাধ্যমে তৈরি করা হয় এই রিফাইনড কার্বস উদাহরণ সাদা ময়দা সাদা চাল সাদা রুটি এছাড়া রিফাইনড কার্বসের অন্তর্ভুক্ত এই রিফাইনিং বা পরিশোধনের মাধ্যমে শস্যদানা থেকে এর ফাইবার আলাদা করে ফেলা হয় যা এর পুষ্টিগুণ অনেক কমিয়ে ফেলে কিছু রিফাইনড কার্বস জাতীয় খাবারের উদাহরণ হলো সাদা পাউরুটি সাদা ভাত বিভিন্ন কেইক ও প্যাস্ট্রিস তরল পানীয় বা বেভারেজ ড্রিংকস পাস্তা ও নুডলস এবং বিভিন্ন প্যাকেটজাতীয় তৈরি খাবার এই রিফাইনড কার্বস জাতীয় খাবার স্থুলতা ডায়াবেটিস এবং হৃদরোগের মতো রোগের সৃষ্টি করে এবং পাশাপাশি এনজাইটি এবং বিষণ্ণতা জাতীয় সমস্যা বাড়িয়ে তোলে এজন্য সাদা আটা ও ময়দা দিয়ে তৈরি খাবার যেন পরিমিত মাত্রায় গ্রহণ করা হয় সে ব্যাপারে সচেতন থাকতে হবে পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন বা প্রসব পরবর্তী ডিপ্রেশন সন্তান জন্মদানের পরবর্তী সময়ে নতুন মা যেই ডিপ্রেশনে ভুগে থাকেন তাকে পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন বলা হয় সন্তান জন্ম দেওয়ার পর দুঃখবোধ হওয়া কিংবা শূন্যতা অনুভব করা স্বাভাবিক বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই এর স্থায়িত্ব হয় কয়েক দিন কিন্তু যদি এমন হয় যে সন্তান জন্মদানের দুই সপ্তাহের বেশি সময় ধরে এই মন খারাপ অসহায় বোধ হওয়া ভাব থেকে যায় তবে তিনি পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশনে ভুগতে পারেন এর কিছু লক্ষণ হলো– অস্থির লাগা বা মেজাজ খারাপ হয়ে থাকা দুঃখবোধ হওয়া বা অসহায় লাগা শিশুকে বা নিজেকে আঘাত করার কথা চিন্তা করা সন্তানের প্রতি কোনো আগ্রহ কাজ না করা তার থেকে দূরে থাকা অর্থাৎ এমন মনে হওয়া যে সন্তান নিজের নয় অন্য কারোর কোনো শক্তি বা অনুপ্রেরণা না পাওয়া খুব কম খাওয়া কিংবা অতিরিক্ত খাওয়া স্মৃতিঘটিত সমস্যা হওয়া অপরাধবোধে ভোগা বা নিজেকে খারাপ মা মনে হওয়া পরিবার ও বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া সন্তান জন্মদানের পর দেহে হরমোনের পরিবর্তনের কারণেও এই ডিপ্রেশন হতে পারে প্রিমেনস্ট্রুয়াল ডিসফোরিক ডিসঅর্ডার বা পিরিয়ড পূর্বকালীন ডিপ্রেশন পিরিয়ড বা ঋতুস্রাব শুরু হওয়ার আগে নারীরা ডিপ্রেশনের এই ধরনটির মুখোমুখি হতে পারে এর কিছু লক্ষণ হলো– মুড সুইং হওয়া বিরক্তি লাগা ভয় লাগা মনোযোগে ঘাটতি দেখা দেওয়া ক্লান্ত লাগা ঘুমে সমস্যা সাম্প্রতিককালের একাধিক গবেষণায় দেখা গেছে যারা প্রাকৃতিক ও সুষম খাদ্যে অভ্যস্ত তাদের মানসিক স্বাস্থ্য প্রক্রিয়াজাত খাবারে অভ্যস্ত ব্যাক্তিদের চেয়ে ভালো থাকে এই গবেষণাগুলো করা হয়েছিল মূলত ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভাসকে প্রক্রিয়াজাত খাদ্যাভাসের সাথে তুলনা করে ভূমধ্যসাগরীয় খাদ্যাভাসে প্রধানত রয়েছে স্বাস্থ্যকর চর্বিসমৃদ্ধ মাছ অলিভ অয়েল এবং শাকসবজি স্বাস্থ্যকর খাদ্য বিষণ্ণতা কমাতেও সাহায্য করে বলে দেখা গেছে বিভিন্ন ধরনের বাদাম তেলযুক্ত মাছ জলপাই তেল তিলের তেল শস্যবীজ যেমন তিল তিসি ইত্যাদি প্রাকৃতিক ও স্বাস্থ্যকর তেল ও তেলের উৎস বেশি বেশি খাওয়া উচিত অধিক প্রক্রিয়াজাত খাবার যেমন সাদা চিনি ও চিনিযুক্ত খাদ্য ফ্রোজেন খাবার চিপস সফট ড্রিঙ্ক ইত্যাদি এড়িয়ে চলতে হবে দিনে কমপক্ষে দুইবার আলাদাভাবে ফলমূল ও শাকসবজি খাওয়ার চেষ্টা করতে হবে আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে ফলমূলশাকসবজি ছাড়াও লাল চাল ও লাল গম আঁশের ভালো উৎস পর্যাপ্ত পরিমাণ পানি পান করতে হবে চিনি ছাড়া ফলের রস বা অন্য পানীয় স্বাস্থ্যের জন্য ভালো শরীরচর্চা পর্যাপ্ত ঘুম ধূমপান বর্জনের সাথে সুষম খাদ্যাভ্যাস শরীর ও মনের মঙ্গলের জন্য নিশ্চিত করা দরকার জীবনযাপনের অনেক ধরনের দুশ্চিন্তা চাপ আমাদের নিয়ন্ত্রণের বাইরে হলেও আমাদের খাবার ও অন্যান্য স্বাস্থ্যকর অভ্যাস মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখতে সহায়তা করতে পারে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা হতে পারে ক্ষণস্থায়ী আবার হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী দীর্ঘস্থায়ী বিষণ্ণতায় আপনাকে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে তবে সবসময় যে চিকিৎসার মাধ্যমে বিষণ্ণতা থেকে মুক্তি মিলবে এমনটাও নয় তাই তারচেয়ে এর পেছনে থাকা কারণ খুঁজে বের করা কারণগুলো আগে থেকেই প্রতিরোধ করা বেশি কার্যকর দৈনন্দিন জীবনে আমরা কিছু ছোটো ছোটো পরিবর্তন করেই ডিপ্রেশনকে দূরে রাখতে পারি ১ ব্যায়াম করা সপ্তাহে অন্তত ৩ থেকে ৫ দিন আধঘণ্টা সময় আমরা ব্যয় করতে পারি ব্যায়ামের জন্য বিভিন্ন গবেষকের মতে শরীরচর্চা বা ব্যায়াম– শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি করে যা দেহের কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্র শান্ত রাখে দেহের এন্ডোরফিন নামক হরমোনের ক্ষরণ বাড়ায় যা মন ভালো রাখতে সাহায্য করে দেহের ইমিউন সিস্টেমের যে অংশগুলো ডিপ্রেশন বাড়িয়ে দেয় সেগুলোর প্রভাব কমায় ২ মাদকদ্রব্য থেকে দূরে থাকা মদ ফেনসিডিল ইয়াবা বা অন্যান্য মাদকদ্রব্য গ্রহণে সাময়িক প্রশান্তি মেলে বলে ধারণা করা হলেও তা কিন্তু শরীরের জন্য একদমই উপকারী নয় দীর্ঘদিন ধরে মাদকদ্রব্য গ্রহণের ফলে ডিপ্রেশন ও উদ্বিগ্নতার লক্ষণ আরও প্রকোপ হয় ৩ সীমা নির্ধারণ করতে শেখা কোনো বিষয় বা কাজ নিয়ে অতিরিক্ত মগ্ন হয়ে থাকা ডিপ্রেশন আর অস্থিরতা দুটোই বাড়িয়ে দিতে পারে অতএব ব্যক্তিজীবন এবং কর্মজীবনের মাঝখানে সীমা টানতে হবে ৪ সিগারেটকে না বলা সিগারেট আর ডিপ্রেশন একে অপরকে স্থায়ী করে তোলে ডিপ্রেশন থেকে দূরে থাকতে সিগারেট খাওয়ার অভ্যাস ছাড়তে হবে ৫ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার নিয়ন্ত্রণ করা বেশকিছু গবেষণা বলছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের অতিরিক্ত ব্যবহার ডিপ্রেশনের কারণ হতে পারে এবং আত্মসম্মানবোধ কমিয়ে দিতে পারে তাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহার কমিয়ে পরিবার বন্ধু কিংবা সহকর্মীদের বেশি সময় দেওয়া উচিত ৬ মানসিক চাপ কমানো দীর্ঘসময় মানসিক চাপ নিয়ে থাকা ডিপ্রেশনের একটি সাধারণ কারণ কোনো বিষয় বা কাজের প্রতি অতিরিক্ত প্রতিশ্রুতিবদ্ধ হয়ে গেলে তা ডিপ্রেশনের সম্ভাবনা বাড়িয়ে তোলে তাই নিজেকে বুঝিয়ে যা করা বা পাওয়া সম্ভব নয় তা নিয়ে চিন্তা করা বাদ দেওয়াই ভালো ৭ ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ভালো করে জানা যে ওষুধ খাওয়া হচ্ছে তার পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াগুলো আগে ভালোভাবে জেনে নিতে হবে এমন কিছু ওষুধ রয়েছে যেগুলোর পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে ডিপ্রেশন বাড়তে পারে তাই যেকোনো ওষুধই চিকিৎসকের পরামর্শমতো খাওয়া উচিত এবং ওষুধটির পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় ডিপ্রেশন হতে পারে কি না সেটা জেনে নেওয়া উচিত ৮ নিজের যত্ন নেওয়া নিজের যত্ন নেওয়ার মাধ্যমে সহজেই ডিপ্রেশনের মাত্রা কমিয়ে আনা যায় পরিমিত ঘুমাতে হবে আর স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস থাকতে হবে মন খারাপের কারণ হবে এমন মানুষদের এড়িয়ে চলতে হবে যেসব কাজে আনন্দ পাওয়া যায় তাতে বেশি বেশি অংশ নিতে হবে নিজেকে ভালোবাসা বিষণ্ণতা কমানোর জন্য সবচেয়ে জরুরি বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO)এর দেওয়া গাইডলাইন অনুযায়ী ডিপ্রেশনকে যে কটি বিষয় দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে সেগুলো হলো দুঃখ আগ্রহ বা আনন্দ হারিয়ে ফেলা অপরাধবোধ নিজেকে মূল্যহীন লাগা ঘুম ও ক্ষুধায় বিরক্তি ক্লান্তি দুর্বল মনোযোগ বিভিন্ন কারণে ডিপ্রেশন হতে পারে হয় জৈবিক কিংবা পারিপার্শ্বিক পরিস্থিতির কারণে ডিপ্রেশনের প্রচলিত কিছু কারণ হলো মস্তিষ্কের রসায়ন মস্তিষ্কের যে অংশ মনঃমেজাজ চিন্তাভাবনা ঘুম ব্যবহার ইত্যাদি পরিচালনা করে তাতে রাসায়নিক ভারসাম্যহীনতার কারণে ডিপ্রেশন হতে পারে হরমোনের পরিবর্তন নারীর ইস্ট্রোজেন এবং প্রোজেস্টেরন নামক হরমোনের পরিবর্তন যা মাসিক ঋতুস্রাব প্রসব পরবর্তী ঋতুস্রাব পেরিমেনোপজ বা মেনোপজের সময় হয়ে থাকে তা ডিপ্রেশন ঝুঁকি বাড়াতে পারে শারীরিক অসুস্থতা অনিদ্রা দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা স্ট্রোক হার্ট অ্যাটাক ক্যান্সারসহ দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়াতে পারে ব্যথা বা পীড়া যারা দীর্ঘসময় ধরে মানসিক বা দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক ব্যথা অনুভব করেন তাদের বিষণ্ণতা হওয়ার সম্ভাবনা উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি পারিবারিক ইতিহাস পরিবারের ঘনিষ্ঠ আত্মীয়স্বজনের মধ্যে ডিপ্রেশন থাকলে এই রোগ হতে পারে শৈশবের ট্রমা (মানসিক আঘাত) খুব ছোটোবেলার কোনো স্মৃতি যা এখনও মনে ভয় ও চাপের সৃষ্টি করে তার কারণে ডিপ্রেশন হতে পারে মাদক সেবনের ইতিহাস আপনার ঝুঁকিকে প্রভাবিত করতে পারে ডিপ্রেশনের ঝুঁকির কারণ ওপরে উল্লেখিত কারণ ছাড়াও কিছু কারণ রয়েছে যেগুলো ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় এগুলো হলো লিঙ্গ গবেষণায় দেখা গেছে পুরুষদের তুলনায় নারীদের মধ্যে ডিপ্রেশনের প্রকোপ দ্বিগুণ বেশি আর্থসামাজিক অবস্থা আর্থিক সমস্যা নিম্ন সামাজিক অবস্থা ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় ভিটামিন ডিএর অভাব ডিপ্রেশনের ঝুঁকি সৃষ্টি করে ওষুধ সেবন জন্মনিয়ন্ত্রণ পিল কর্টিকোস্টেরয়েড এবং বিটা ব্লকারসহ কিছু ওষুধ বিষণ্ণতার বর্ধিত ঝুঁকির সাথে যুক্ত হতে পারে দীর্ঘস্থায়ী রোগ হৃদরোগে আক্রান্ত ব্যক্তিদের বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রায় দ্বিগুণ হয় যারা করেন না অন্যদিকে ক্যান্সারে আক্রান্ত ৪ জনের মধ্যে ১ জনেরও বিষণ্ণতা অনুভব করতে পারে মাদক সেবনের ফলেও আপনার ডিপ্রেশনের ঝুঁকি বাড়তে পারে এছাড়া প্রিয়জনের মৃত্যু অসুখী বিবাহিত জীবন কর্মস্থলের বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে সমস্যা একাকীত্ব ইত্যাদিও মানুষের ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা বাড়িয়ে দিতে পারে সবার ক্ষেত্রে ডিপ্রেশনের লক্ষণ যে এক হবে এমনটা নয় নিজের মনের কথা শুনুন এবং শারীরিক স্বাস্থ্যের মতো মানসিক স্বাস্থ্যকেও গুরুত্ব দিন ডিপ্রেশনে থেকে ডিপ্রেশনকে নিয়ে লজ্জা না করে পরামর্শ করুন কাউন্সেলরের বা থেরাপিস্টের সাথে এতে নিজের জীবন ভালো কাটবে অন্যকেও ভালো রাখবেন এবং অনেক জটিল শারীরিক ব্যাধি থেকেও পাবেন মুক্তি খাদ্যাভ্যাস শরীরচর্চা এবং জীবনধারায় প্রয়োজনীয় পরিবর্তন আনার মাধ্যমে আমরা যেমন আমাদের শারীরিক বিভিন্ন রোগ মোকাবিলা করতে পারি ঠিক তেমনই বিষণ্ণতার মতো মানসিক বিভিন্ন সমস্যাও দূরে রাখতে পারি চলুন জেনে আসি কী করে জীবনযাত্রায় একটুখানি পরিবর্তনের মাধ্যমে বিষণ্ণতা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব ১ ব্যায়াম সপ্তাহে ৩ থেকে ৫ দিন ৩০ মিনিটের শরীরচর্চা করুন ব্যায়াম আপনার শরীরে এন্ডোরফিন উৎপাদন বাড়ায় যেটি আমাদের মন ভালো এবং উৎফুল্ল রাখার হরমোন হাঁটা খুব ভালো মানের শারীরিক ব্যায়াম ২ মাদক সেবন পরিহার যেকোনো মাদক শুরুতে আমাদের ভালো বোধ করায় তবে দীর্ঘমেয়াদে এগুলো হতাশা এবং উদ্বেগের তৈরি করে বিষণ্ণতাকে দূরে রাখতে চাইলে মাদক থেকে দূরে থাকুন ৩ সীমা নির্ধারণ অতিরিক্ত কাজ এবং বহুমুখী দ্বায়িত্ব আপনাকে উদ্বেগ এবং বিষণ্ণতার দিকে ঠেলে দেয় আপনি পেশাগত এবং ব্যক্তিগত জীবনে কতটুক ভার সামলাবেন এবং তাতে আপনার শরীর ও মন কতটুক সায় দেয় সেটা বুঝে নিতে হবে আপনাকেই ৪ নিজের যত্ন নিজেই আমাদের শারীরিক এবং মানসিক–দুই ধরনের স্বাস্থ্যের কথাই মাথায় রাখতে হবে–কারণ শরীর ও মন একে অন্যের সাথে সরাসরি জড়িত যথেষ্ট ঘুম স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়া নেতিবাচক মানুষ এড়িয়ে চলা এবং আনন্দদায়ক কার্যকলাপের মাধ্যমে নিজেকে মানসিক ও শারীরিকভাবে সুস্থ রাখার চেষ্টা করুন ৫ প্রয়োজনীয় ভিটামিন গ্রহণ করুন ভিটামিন B12 এবং B6 মস্তিষ্কের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ যখন আপনার ভিটামিন বিএর মাত্রা কম থাকে তখন আপনার বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বেশি হতে পারে ভিটামিন ডি মস্তিষ্ক হার্ট এবং হাড়ের স্বাস্থ্যের জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং এর ঘাটতি বিষণ্ণতার উৎস এছাড়াও আপনার চিকিৎসক আপনাকে ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড বা ওমেগা 3 চর্বি যুক্ত খাবার খেতে বলতে পারে তবে কখনই এসব ভিটামিন সাপ্লিমেন্টগুলো ইচ্ছামতন খাওয়া যাবে না কারণ এগুললোর ভুল ব্যবহার আপনার শরীরের জন্য ক্ষতির কারণ হতে পারে যেকোনো ধরনের ভিটামিন গ্রহণের আগে অবশ্যই ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে নিতে হবে জীবনযাত্রায় এই পরিবর্তনগুলো বিষণ্ণতাকে দূরে রাখতে সহায়তা করে তবে এরপরও যদি আপনার বিষণ্ণতার সমস্যার উন্নতি না হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে ডিপ্রেশন বা বিষণ্ণতা একেক জনের ক্ষেত্রে একেক রকম হতে পারে লক্ষণের তীব্রতার ওপর নির্ভর করে একে কয়েকটি ভাগে ভাগ করা যায় মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার (এমডিডি) বা গুরুতর ডিপ্রেশন ডিপ্রেশনের গুরুতর রূপটিকে বলা হয় মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার নিজের ইচ্ছার বিরুদ্ধে যখন কোনো ব্যক্তি অবিরাম হতাশা দুঃখবোধ আর মূল্যহীনতায় ভোগেন তখন ধরা যায় তিনি ডিপ্রেশনের এই পর্যায়ে রয়েছেন মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারের কিছু লক্ষণ হলো– দিনের বেশিরভাগ সময়েই হতাশায় নিমজ্জিত থাকা প্রায় সব কাজেই আগ্রহ হারিয়ে ফেলা চোখে পড়ার মতো ওজন বাড়া বা কমে যাওয়া অতিরিক্ত ঘুমানো কিংবা একদমই ঘুমাতে না পারা চিন্তাভাবনা বা চলাচলে গতি ধীর হয়ে যাওয়া প্রায় দিনই ক্লান্তি অনুভব করা নিজেকে মূল্যহীন লাগা বা অপরাধবোধে ভোগা মনোযোগ হারিয়ে ফেলা বা সিদ্ধান্তহীনতায় থাকা বারবার মৃত্যু বা আত্মহত্যার কথা ভাবা যদি কোনো ব্যক্তি ২ সপ্তাহের বেশি সময় ধরে ওপরের ৫ বা তার অধিক সমস্যায় ভুগে থাকেন তবে বলা যেতে পারে তিনি মেজর ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারে ভুগছেন যত দ্রুত সম্ভব তার চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া দরকার পার্সিস্ট্যান্ট ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডার (পিডিডি) বা স্থায়ী ডিপ্রেশন ডিপ্রেশনের এই ধরনটিকে ডিস্টিমিয়াও বলা হয়ে থাকে এর প্রভাব হালকা হলেও এটি বেশি স্থায়ী হয় পার্সিস্ট্যান্ট ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারের কিছু লক্ষণ হলো– স্বাভাবিক দৈনন্দিন কাজকর্মে আগ্রহ হারিয়ে ফেলা নিরাশ হয়ে পড়া আত্মসম্মান কমে যাওয়া নতুন কিছু করার মাত্রা কমে যাওয়া অন্তত দুই বছর ধরে যদি কোনো ব্যক্তি ওপরের সমস্যাগুলোর সম্মুখীন হয়ে থাকেন তবে বলা যেতে পারে তিনি পার্সিস্ট্যান্ট ডিপ্রেসিভ ডিসঅর্ডারে ভুগছেন সাইকোটিক বা মানসিক ডিপ্রেশন এই ডিপ্রেশনে ভোগা রোগীর মধ্যে যেসব লক্ষণ দেখা দিতে পারে তা হলো– হ্যালুসিনেশন (এমন কিছু দেখা বা শোনা বাস্তবে যার অস্তিত্ব নেই) বিভ্রম (মিথ্যা বিশ্বাস) প্যারানয়া (অন্যরা ক্ষতি করবে এমনটা বিশ্বাস করা) এছাড়াও নারীরা পিরিয়ড পূর্বকালীন ডিপ্রেশন এবং প্রসব পরবর্তী ডিপ্রেশনেও আক্রান্ত হতে পারেন ডিপ্রেশনের ধরন যাই হোক সঠিকভাবে তা জানলে এবং সেই অনুযায়ী চিকিৎসা গ্রহণ করলে তা সামলে ওঠা যায় স্ট্রেসের সাথে আমরা সবাইই কম বেশি পরিচিত আমাদের নগরজীবনের এক নিয়মিত সমস্যা স্ট্রেস যেটি আমাদের আরো অনেক শারীরিক এবং মানসিক রোগের অন্যতম প্রধান কারণ স্ট্রেস থেকে রক্ষা পেতে অনেকেই অনেক কিছু করেন–তবে আপনি যদি জীবনের চাপ বা এই স্ট্রেসকে পাশ কাটিয়ে দীর্ঘ সুস্থ জীবন চান তবে সবচাইতে সহজ সমাধান হলো ব্যায়াম করা শুরু করুন চলুন প্রথমেই জেনে নেই স্ট্রেস প্রতিরোধে আমাদের কতটা ব্যায়াম করা দরকার স্ট্রেসকে দূরে রাখতে প্রতি সপ্তাহে কমপক্ষে ১৫০ মিনিট অর্থাৎ কমপক্ষে পাঁচ দিন ৩০ মিনিট মাঝারি অ্যারোবিক ব্যায়ামের পরামর্শ দেয় আমেরিকান হার্ট অ্যাসোসিয়েশন যদি আপনার সময় কম থাকে পুরো ৩০ মিনিটের সেশনটি সারাদিনে তিনবার ১০মিনিট করে ভেঙে ভেঙে করতে পারেন এর পাশাপাশি আপনার সাপ্তাহিক রুটিনে পেশি শক্তিশালী করার ব্যায়ামগুলোর কমপক্ষে দুইটি সেশন রাখা জরুরি এ ব্যায়ামগুলো আপনার বাহু কাঁধ বুক পিঠ পেট পা এবং অন্যান্য পেশিকে সবল রাখতে সহায়তা করে তবে যত সহজে বলে দেওয়া গেল নিয়মিত ব্যায়াম করা যে ততটা সহজ না সেটা আমরা সবাইই জানি এজন্য প্রয়োজন অভ্যাসের শরীরচর্চার সাথে ধীরে ধীরে আপনার শরীরকে মানিয়ে নিন প্রথমে না হয় সপ্তাহে তিন দিন ২০ মিনিট করে জোরে জোরে হাঁটুন এবং পরে সেখান থেকে ধীরে ধীরে বাড়ান কী ধরনের ব্যায়াম স্ট্রেস থেকে মুক্তি দেয় স্ট্রেস কমানোর জন্য যেসব ব্যায়াম–সেগুলো করার জন্য আপনাকে ক্রীড়াবিদ হতে হবে না প্রায় যেকোনো ধরনের ব্যায়াম সহায়ক হতে পারে মূল কথা হলো ঘাম ঝরতে হবে হার্টবিট স্বাভাবিকের চেয়ে দ্বিগুণ করে বেশ কিছুক্ষণ ধরে রাখতে হবে মাঝারি মানের যেকোনো ব্যায়ামই এগুলোর জন্য যথেষ্ট মাঝারি অ্যারোবিক ব্যায়ামের মধ্যে আছে সাইকেল চালানো দ্রুত হাঁটা বা জগিং সাঁতার কাটা টেনিস নাচ রোয়িং এমনকি শীতকালের প্রিয় খেলা ব্যাডমিন্টন পেশিশক্তিশালী ব্যায়ামের ক্ষেত্রে ভারোত্তলনকে বিবেচনা করতে পারেন এমনকি বাগান করা বা লিফটের পরিবর্তে সিঁড়ি বেয়ে ওঠার মতো সহজ কিছু ব্যায়ামও আপনার স্ট্রেস কমিয়ে দিতে পারে ব্যায়াম শব্দটা শুনলেই আমরা অনেকে ভয় পেয়ে যাই এই ভয়টা দূর করতে হবে তাই আপনি উপভোগ করেন এমন কোনো শরীরচর্চা দিয়ে শুরু করা ভালো আপনি আনন্দে থাকলে ব্যায়াম আপনার দৈনন্দিন কাজের অংশ হয়ে উঠবে তখন আর এটাকে বোঝা মনে হবে না ব্যায়ামের ভীতি কাটানোর একটা ভালো উপায় হলো বন্ধু বা পরিবারের সাথে মিলে একসাথে শরীরচর্চা করা যেমন দুই বন্ধু মিলে দৌড়ান বা সাঁতার কাটেন কিংবা পরিবারের সবাইকে নিয়ে হাঁটতে বের হন এতে ব্যায়ামের শারীরবৃত্তীয় উপকারগুলো বেড়ে যায় এবং পাশাপাশি বন্ধু বা পরিবারের সাথে সম্পর্কটাও আরো ভালো হয়ে ওঠে যা স্ট্রেস কমাতে আরো বেশি সাহায্য করে তবে সব বয়সের জন্য সব ধরনের ব্যায়াম নয় আপনার বয়স এবং শারীরিক সক্ষমতার ওপর নির্ভর করেই কোন ধরনের ব্যায়াম করবেন এবং কতক্ষণ করবেন সেটা ঠিক করে নেওয়া উচিত প্রয়োজনে আপনার ডাক্তারকে জিজ্ঞাসা করুন তিনি আপনাকে আপনার শরীরের ফিটনেস অনুযায়ী পরামর্শ দিবেন তলপেটে ব্যথা মেয়েদের মাসিক অথবা ঋতুস্রাব বা পিরিয়ডের সময় সবচেয়ে বেশি ভোগায় খুব কম নারীই আছেন যাদের একবারও এই পেট ব্যথা হয়নি কিন্তু এই ব্যথা কেন হয় তা কি আমরা জানি আর এই ব্যথা কতটুকু পর্যন্ত হওয়া স্বাভাবিক চলুন জেনে নেওয়া যাক পিরিয়ডের ব্যথা হয় জরায়ুতে সংকোচনের কারণে পিরিয়ড শুরু হওয়ার ঠিক আগে দিয়ে তলপেটে ব্যথা হওয়া তাই খুবই স্বাভাবিক কিন্তু কারো কারো ক্ষেত্রে এই ব্যথা খুব তীব্র হতে পারে এর পেছনের কারণগুলো চলুন জেনে আসি মাসিকে সময় জরায়ুর সংকোচন হয় প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিন নামক হরমোনের মাধ্যমে যাদের শরীরে প্রোস্টাগ্ল্যান্ডিনের মাত্রা বেশি তাদের তলপেটে তীব্র ব্যথা হয় অন্যদিকে কারো কারো কোনো স্পষ্ট কারণ ছাড়াই এই তীব্র ব্যথা হয় তবে অনেকের এই গুরুতর পিরিয়ডের ব্যথা কোনো অন্তর্নিহিত অসুস্থতার লক্ষণও হতে পারে যেসব অসুস্থতার কারণে তীব্র মাসিকের ব্যথা হয় সেগুলো হলো ১ এন্ডোমেট্রিওসিস এন্ডোমেট্রিওসিস একটি দীর্ঘস্থায়ী অবস্থা যেখানে জরায়ুর কোষগুলো জরায়ুর বাইরে বৃদ্ধি পায় এর সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ হলো কোমর ও তলপেটে ব্যথা (পেলভিক পেইন) এর সাথে হতে পারে মাসিকে ভারী রক্তক্ষয় সাত দিনের বেশি পিরিয়ড দুটো মাসিকের মাঝে রক্তপাত পেটে ব্যথা সহবাসের সময় ব্যথা এবং গর্ভধারণে সমস্যা ২ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম (PCOS) সন্তানধারণে সক্ষম নারীদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ১ জন PCOS নামক হরমোনজনিত ব্যাধিতে আক্রান্ত হয় এক্ষেত্রে রোগীদের শরীরে এন্ড্রোজেনের (পুরুষদের হরমোন) উচ্চ মাত্রা এবং অনিয়মিত পিরিয়ড হতে দেখা যায় মাসিকে ভারী রক্তক্ষয় সাত দিনের বেশি পিরিয়ড মুখ এবং শরীরের অতিরিক্ত চুল ওজন বৃদ্ধি এবং ওজন কমানোর সমস্যা ব্রণ চুল পাতলা হওয়া বা চুল পড়া ত্বকের কালো দাগ বিশেষ করে ঘাড় এবং কুঁচকির অংশে কালো দাগ হলো PCOSএর লক্ষণ ৩ ফাইব্রয়েড জরায়ুর ভিতরের মায়োমেট্রিয়াম নামক জায়গায় বীজের মতো ছোটো থেকে শুরু করে বৃহদাকার ফাইব্রয়েড তৈরি হতে পারে লক্ষণ ছাড়াই আপনার এক বা একাধিক ফাইব্রয়েড থাকতে পারে তবে উপসর্গ দেখা দিলে সেগুলোর ধরণ এবং তীব্রতা নির্ভর করে ফাইব্রয়েডের সংখ্যা তাদের আকার এবং অবস্থানের ওপর তলপেটে তীব্র ব্যথা ছাড়াও ফাইব্রয়েডের কারণে কোমরে ব্যথা পিঠ ব্যথা পা ব্যথা মাসিকে ভারী রক্তক্ষয় সাত দিনের বেশি পিরিয়ড ইত্যাদি হতে পারে ৪ পেলভিক ইনফ্লামেটরি ডিজিজ (পিআইডি) পিআইডি হলো নারীর প্রজনন অঙ্গে ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ এটি সাধারণত যৌনমিলনে সংক্রমিত রোগ যেমন ক্ল্যামাইডিয়া বা গনোরিয়া দ্বারা সৃষ্ট হয় কোমর ব্যথা এই রোগের সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ যৌনমিলনে ব্যথা যৌনমিলনের সময় বা পরে রক্তপাত দুর্গন্ধযুক্ত যোনি স্রাব প্রস্রাব করার সময় জ্বালা পোড়া জ্বর মাসিক হওয়ার আগে পরে ছোপ ছোপ রক্ত পড়া–এসবই পিআইডির আরো কিছু লক্ষণ ৫ সার্ভাইকাল স্টেনোসিস সারভাইকাল স্টেনোসিস যার অর্থ বন্ধ যোনিপথ এতে আপনার সার্ভিক্স বা যোনিপথ সরু বা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ থাকে যে কেউ সারভাইকাল স্টেনোসিস নিয়ে জন্মগ্রহণ করতে পারেন কিংবা বয়সের সাথেও এই অবস্থা তৈরি হতে পারে এই রোগে আপনার শরীর থেকে ঋতুস্রাবের রক্ত ​​বের হতে বাধাপ্রাপ্ত হতে পারে যার কারণে মাসিক খুব হালকা বা অনিয়মিত হয় সারভাইকাল স্টেনোসিসের কারণে প্রজনন সমস্যাও হতে পারে ৬ অ্যাডেনোমায়োসিস অ্যাডেনোমায়োসিসে জরায়ু ফুলে ওঠে এই ক্ষেত্রে সবসময় উপসর্গ দেখা যায় না তবে এর কারণে আপনি তীব্র তলপেটে ব্যথা অনুভব করতে পারেন যা ক্রমশ বাড়তে থাকে এবং সেইসাথে মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত বা দীর্ঘায়ত মাসিক হতে পারে ৭ জন্মনিয়ন্ত্রন পদ্ধতি (IUD) IUD হলো একটি ছোটো জন্ম নিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি যা আপনার জরায়ুতে ব্যবহৃত হয় বিভিন্ন ধরনের IUD পাওয়া যায় এদের কোনো কোনোটিতে হরমোন থাকে আবার কিছু থাকে হরমোনমুক্ত IUD সম্পূর্ণ নিরাপদ কিন্তু মাঝে মাঝে এটির কারণে পার্শ্ব প্রতিক্রিয়া তৈরি হতে পারে–যার মধ্যে রয়েছে তীব্র মাসিকের ব্যথা অনিয়মিত মাসিক এবং মাসিকে অতিরিক্ত রক্তপাত আইইউডি ঢোকানোর সময় আপনার জরায়ুতে ব্যাকটেরিয়া প্রবেশ করার ঝুঁকিও রয়েছে যার ফলে পিআইডি হতে পারে আবার কখনো কখনো আইইউডি সরে যেতে পারে এসব কারণেও কোমর ব্যথা হতে পারে নারীদের ক্ষেত্রে মাসিকের সাথে ব্যথা হবেই তীব্র হলেও তা সহ্য করে নিতে হবে–এই মানসিকতা থেকে বের হয়ে আসাটা খুব জরুরি নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য তার নিজের জন্য তার সন্তান এবং সর্বোপরি তার পরিবারের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ তাই মাসিকের সময় ব্যথা যদি অনেক বেশি হয় এবং তা যদি নিয়মিতই হতে থাকে তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন আপনার যোনি সুস্থ রাখাটা অত্যন্ত জরুরি জরায়ু যোনিপথ আর যোনি খুবই নাজুক অঙ্গ নারীর দেহে এর অবস্থা নারীর পুরো শরীরের ওপর প্রভাব ফেলে নারীর যৌনাঙ্গে সংক্রমণ হওয়াও খুব সহজ তাই যোনিপথের যত্ন নিতে এই নিয়মগুলো কাজে আসবে– ১ গোসলের সময় আপনার যোনির বাইরের অংশ পানি দিয়ে পরিষ্কার করুন মতান্তরে সাবানও ব্যবহার করতে পারেন ২ যোনিপথে সুগন্ধযুক্ত পণ্য ব্যবহার করা এড়িয়ে চলুন যেমন সুগন্ধযুক্ত প্যাড বা নান্দনিক ভ্যাজাইনাল ক্লিনার ৩ যোনিতে জ্বালাপোড়া এড়াতে ঢিলেঢালা পোশাক পরুন আঁটোসাঁটো কাপড় কুঁচকির এলাকার জন্য অস্বস্তিকর এমন কাপড় পরিহার করুন ভেজা কাপড় বদলে ফেলুন যৌনাঙ্গের এলাকা ভেজা রাখবেন না ৪ আপনি যদি যৌনভাবে সক্রিয় হন তবে নিয়মিত পরীক্ষা করুন এবং ডাক্তারের পরামর্শ নিন ৫ অনিয়মিত যোনি স্রাব বা স্বাভাবিকের থেকে অন্য রঙ এবং অন্য ধরনের স্রাব বের হলে অবস্থা খারাপ হওয়ার আগে অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে যান ২০১৮ সালের International Agency for Research on Cancer (IARC)এর তথ্যমতে বাংলাদেশে প্রতি বছর ১২ হাজারের বেশি নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হন এবং প্রায় সাড়ে ছয় হাজার নারী মারা যান সার্ভিক্যাল ক্যান্সার বা জরায়ুমুখ ক্যান্সারে প্রতিবছরই এত মৃত্যু হওয়া সত্ত্বেও জরায়ুমুখ ক্যান্সার নিয়ে আমাদের অনেকেরই খুব একটা ধারণা নেই অথচ একটু সচেতন থাকলে খুব সহজেই জরায়ুমুখ ক্যান্সার প্রতিরোধ করা সম্ভব সার্ভিক্স হলো জরায়ুর নিচের দিকের অংশ যা নারী দেহের যোনি এবং জরায়ুকে সংযুক্ত করে যখন এই জায়গার কোষগুলো অস্বাভাবিকভাবে পরিবর্তন হতে শুরু করে তখন ব্যাপারটি ক্যান্সারে রূপ নেয় অনেক সময় ক্যান্সার সার্ভিক্স থেকে শুরু হয়ে পরবর্তীতে ফুসফুস যকৃত মূত্রথলি যোনি পায়ুপথেও ছড়িয়ে যেতে থাকে জরায়ুমুখ ক্যান্সার হয় এক ধরনের ভাইরাসের আক্রমণে যার নাম হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস আর এটি ছড়ায় ওই ভাইরাস আছে এমন কারো সাথে যৌনমিলন হলে যৌনমিলনের সময় পুরুষের কাছ থেকে নারীদেহে এই ভাইরাস ঢুকে যায় ভাইরাসটি ঢোকার সাথে সাথেই ক্যান্সার হয় না ক্যান্সার হতে বেশ কয়েক বছরও লাগতে পারে যখন নারীর শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় তখনই এই ভাইরাসটি ক্যান্সার রোগের সৃষ্টি করে জরায়ু মুখের ক্যান্সারের মূল অসুবিধাটি হলো এটি শেষ পর্যায়ে গেলেই শুধুমাত্র ব্যথা দেখা দেয় এর আগপর্যন্ত এর লক্ষণগুলোকে অনেকেই মাসিকের মেয়েলি সমস্যা বলে মনে করেন ক্যান্সার যখন একেবারে শেষ পর্যায়ে চলে যায় তখন রোগটা অনেক দূর ছড়িয়ে যায় প্রাথমিকভাবে কোনো ব্যথা থাকে না দেখেই আমাদের দেশের নারীরা হাসপাতালে আসেন না এমনকি যখন হয় হওয়ার পরেও তারা অপেক্ষা করে দেখা যায় দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব যাচ্ছে কিন্তু লজ্জায় সে কাউকে বলছে না স্বামীর সাথে মেলামেশায় রক্ত যাচ্ছে সেটিও সে বলছে না ফলে যখন হাসপাতালে আসে তখন অনেকে দেরি হয়ে যায় অথচ এতদূর পর্যন্ত এটি গড়ানোরই কথা নয় কারণ অন্য ধরনের ক্যান্সারের তুলনায় জরায়ুমুখের ক্যান্সার সবচাইতে সহজে নির্ণয় করা যায় এমনকি হওয়ার আগেই খুব সহজ একটি পরীক্ষায় ধরা যায় ক্যান্সার হওয়ার আগের অবস্থা আছে কি না এই পরীক্ষাকে বলে ভায়া টেস্ট যৌন সম্পর্কে আছেন এমন নারীরা ভায়া টেস্ট করিয়ে নিলেই জানতে পারবেন তার জরায়ুমুখ ক্যান্সার হওয়ার আগের অবস্থায় অছে কি না এছাড়া নিয়মিত ভায়া টেস্ট করালে ক্যান্সার হবার আগেই তা নির্ণয় করা সম্ভব–এমনকি যদি কারো জরায়ুমুখ ক্যান্সার হয়–প্রাথমিক অবস্থায় কিছু কিছু ক্ষেত্রে চিকিৎসা করলে তা ভালো হয়ে যায় জরায়ু মুখের ক্যান্সার নির্ণয়ের পরীক্ষার প্রাথমিক ধাপ অর্থাৎ ভায়া টেস্ট করানোটা অত্যন্ত সহজ কোনো ব্যথা লাগে না সময়ও লাগে মাত্র এক মিনিট যেসব নারীর বয়স ৩০ থেকে ৬০এর মধ্যে তাদের প্রতি ৫ বছর পরপর ভায়া টেস্ট করানো দরকার ৩৫ থেকে ৪৪ বছর বয়সি নারীরা সবচেয়ে বেশি সার্ভিইক্যাল ক্যান্সারে আক্রান্ত হন যারা ঝুঁকিতে আছেন ১৬ বছর বয়স হওয়ার আগেই যৌনসংগমের অভিজ্ঞতা থাকলে কিংবা পিরিয়ড শুরুর ১ বছরের মধ্যেই যৌন সঙ্গম শুরু করে থাকলে স্বামী বা যৌন সঙ্গীর শরীরে ভাইরাসটি থাকলে অনেকজন যৌনসঙ্গী থেকে থাকলে জন্মনিয়ন্ত্রণের জন্য দীর্ঘদিন বিশেষত ৫ বছরের বেশি সময় ধরে বড়ি সেবন করে থাকলে ধূমপানের অভ্যাস আছে যাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার ঘাটতি থাকলে যৌনসংগমের মাধ্যমে ছড়ায় এমন কোনো রোগ থেকে থাকলে যেমন–এইডস সিফিলিস গনোরিয়া ইত্যাদি লক্ষণসমূহ যৌনসংগমের সময় ব্যথার অনুভূতি অস্বাভাবিকভাবে যোনিদেশ থেকে রক্তপাত হলে যেমন–যৌনসংগম পরবর্তী সময়ে দুটি পিরিয়ডের মধ্যবর্তী সময়েপিরিয়ড বা রজঃশ্রাব বন্ধ হবার পরে শ্রোণিদেশের কোনো পরীক্ষার পরে যোনিদেশ থেকে অস্বাভাবিকভাবে কোনো পদার্থ বের হতে থাকলে ক্যান্সার ছড়িয়ে যেতে থাকলে যে সমস্ত লক্ষণ দেখা যায়– শ্রোণিদেশে ব্যথা প্রস্রাবে সমস্যা পা ফুলে যেতে থাকা কিডনি ফেইলিউর হাড়ে ব্যথা হওয়া ওজন কমতে থাকা এবং ক্ষুধামান্দ্য দুর্বলতা অনুভব করা কখন একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন রজঃনিবৃতির পরেও রক্তপাত হওয়া কোনো স্বাভাবিক ঘটনা নয় এমনটি ঘটলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্তপাত হলে কিংবা দুটি পিরিয়ডের মাঝে প্রায়ই রক্তপাত হলে আপনার চিকিৎসককে জানান বাংলাদেশের সকল মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সরকারি জেলা সদর হাসপাতাল মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র এমনকি নির্বাচিত কিছু উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে এনজিও ক্লিনিকগুলোতে জরায়ুমুখ ক্যান্সারের পূর্বাবস্থা বোঝার এই ভায়া টেস্ট বিনামূল্যে করা হয় তাই অবহেলা বা সংকোচ না করে নিজের ও আপনার পরিবারের প্রতি ৫ বছর পরপর নিয়মিত জরায়ুমুখ ক্যান্সারের প্রাথমিক পরীক্ষা অর্থাৎ ভায়া টেস্ট করুন জরায়ুমুখ ক্যান্সার থেকে নিরাপদ থাকুন এছাড়া জরায়ুমুখ ক্যান্সারই একমাত্র ক্যান্সার যার টিকা আছে মাসিক শুরুর পরপরই এবং যৌন সম্পর্ক শুরু কিংবা বিয়ের আগে টিকা নিলে এই ক্যান্সার থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব পিরিয়ড বন্ধ হওয়ার বয়সে পৌঁছানোর আগেই মেনোপজকে বলে আর্লি মেনোপজ সব নারীর জীবনে মেনোপজ বা ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া নিয়মমাফিক নাও আসতে পারে সাধারণত ৪৫ বছর বয়সের আগে আনুমানিক ৪০ বছরের দিকে আর্লি মেনোপজ হয় আপনার ডিম্বাশয়ের ক্ষতি করে বা ইস্ট্রোজেন উৎপাদন বন্ধ করে এমন যেকোনো কিছু প্রাথমিক মেনোপজের কারণ হতে পারে আর্লি মেনোপজের লক্ষণগুলো কী কী –খুব বেশি পরিমাণে রক্ত যাওয়া –পিরিয়ড ছাড়াই কাপড়ে ছোপ ছোপ রক্ত –পিরিয়ড এক সপ্তাহের বেশি স্থায়ী হওয়া –দুটি পিরিয়ডের মধ্যে দীর্ঘ সময় বিরতি এছাড়াও মেনোপজের অন্যান্য সাধারণ লক্ষণ যেমন মেজাজ পরিবর্তন যৌন আকাঙ্ক্ষায় পরিবর্তন যোনিতে শুষ্কতা ঘুমের সমস্যা হঠাৎ গরম লাগা রাতের ঘাম প্রস্রাবের নিয়ন্ত্রণ হারানোর মতো আরো বেশ কিছু লক্ষণ দেখা দিতে পারে এই লক্ষণগুলো দেখা দিলে ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করা প্রয়োজন আর্লি মেনোপজ অন্যান্য রোগের ঝুকি তৈরি করে কি স্বাভাবিক সময়ের দশ বছর আগে যদি মেনোপজ শুরু হয় তবে সেটি অবশ্যই চিন্তার বিষয় এটি অকাল বন্ধ্যাত্বের কারণ হতে পারে এই প্রক্রিয়ায় যেহেতু ইস্ট্রোজেন হরমোনটি কমে যায় ফলে শরীরে নানাবিধ সমস্যা দানা বাঁধে এবং সেগুলো বাড়তে থাকে তার মধ্যে রয়েছে ১ অপ্রয়োজনীয় কোলেস্টরল বেড়ে যাওয়া ২ হৃদরোগ ৩ হাড় ক্ষয় এবং অস্টিওপরোসিস ৪ বিষণ্ণতা ৫ ডিমেনশিয়া ৬ অকাল মৃত্যু এরকম নানা জটিলতা এড়াতে নারীর শরীর এবং বিশেষ করে আমাদের মায়েদেরমেয়েদের প্রজনন স্বাস্থ্যের প্রতি লক্ষ রাখা প্রয়োজন মনে রাখবেন মেনোপজের পর আপনি স্রেফ প্রজননক্ষমতা হারাবেন–তার মানে জীবনের গতি স্তব্ধ হয়ে যাওয়া নয় কিন্তু তাই নিজের খেয়াল রাখুন পেটে কোমরে চর্বি জমতে দেবেন না এতে অন্য নানা জটিলতা এড়ানো সম্ভব মাসিক বা ঋতুস্রাব নারী দেহের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া একটা নির্দিষ্ট বয়সের (৪৫ থেকে ৫৫ বছর) পর ঋতুচক্র স্থায়ীভাবে বন্ধ হয়ে যায় একেই মেনোপজ বলে যদি কারো ১২ মাসের বেশি সময় ধরে ঋতুস্রাব /মাসিক বন্ধ থাকে তাহলেই ধরে নিতে হবে এটি মেনোপজ মেনোপজে নারীর ডিম্বাশয় থেকে ডিম্বকোষ উৎপাদন বন্ধ হয়ে যায় এ সময় নারীদেহে বিভিন্ন প্রজননের হরমোন কমে যায় এবং তার নানানরকমের প্রভাব পড়ে নারীদের শরীরে মেনোপজের লক্ষণ প্রতিটি নারীর মেনোপজের অভিজ্ঞতা আলাদা তবে এর লক্ষণগুলো গুরুতর হতে পারে যদি মেনোপজ হঠাৎ বা অল্প সময়ের মধ্যে ঘটে ক্যান্সার হিস্টেরেক্টমি (জরায়ু ফেলে দেওয়ার অপারেশন) ধূমপানের ইতিহাস ডিম্বাশয়ের জন্য ক্ষতিকর যার ফলে লক্ষণগুলোর তীব্রতা এবং সময়কাল বৃদ্ধি করে মেনোপজের সময় নারীর পরিবর্তনগুলো একেকজনের ক্ষেত্রে একেকরকম এবং সব লক্ষণ সবার প্রকাশ নাও পেতে পারে লক্ষণগুলো হলো – যৌন অনুভূতি বা ইচ্ছা না হওয়া – যোনিপথ শুষ্ক হয়ে যাওয়া – প্রস্রাবে নিয়ন্ত্রণ না থাকা – প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া এবং মূত্রনালির সংক্রমণ (ইউটিআই) – ঘুমের সমস্যা হওয়া – মাথাব্যথা – হঠাৎ গরম লাগা – রাতে ঘাম হওয়া – ত্বক মুখ এবং চোখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া – কালশিটে বা কোমল স্তন – বুক ধড়ফড়ানি – পেশি ভর হ্রাস – হাড়ের ভর হ্রাস – গিরায় গিরায় ব্যথা বা শক্ত হয়ে যাওয়া – চুল পাতলা হওয়া – মুখ ঘাড় বুক এবং পিঠের ওপরের অংশে চুল বৃদ্ধি পাওয়া – বিষণ্ণতা – উদ্বেগ – মেজাজি হয়ে যাওয়া – মনোনিবেশ করতে অসুবিধা – কিছু মনে না থাকা বা স্মৃতি সমস্যা বেশিরভাগ নারীদের ক্ষেত্রে জীবনের সর্বশেষ মাসিকের প্রায় চার বছর আগে থেকেই মেনোপজের লক্ষণগুলো শুরু হয় একজন নারীর শেষ মাসিকের প্রায় চার বছর পর পর্যন্ত লক্ষণগুলো প্রায়ই চলতে থাকে আমাদের দেশে মেনোপজকে খুব একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় বলে ভাবা হয় না যেটি একটি ভুল ধারণা এটি নারীদের জীবনে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং এসময় নারী শরীরে অনেক জটিলতাও দেখা দিতে পারে তাই লজ্জা ভেঙে নিজের এবং পরিবারের খাতিরেই এসব লক্ষণ দেখা গেলে গাইনি ডাক্তারের পরামর্শ নিন প্রস্রাবের রাস্তার চুলকানি ফুসকুড়ি নারীদের জন্য খুবই অস্বস্তিকর তবে এর থেকে নিরাময় পাওয়া খুব সহজ প্রথমত সবাইকে পরিষ্কার পরিচ্ছনতা মেনে চলতে হবে সবসময় পরিষ্কার থাকলেই যোনিতে জীবাণুর সংক্রমণ থেকে রক্ষা পাওয়া সম্ভব অন্যের কাপড়চোপড় এবং বিশেষত তোয়ালে ব্যবহার না করাই শ্রেয় এ ছাড়াও স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস খুব গুরুত্বপূর্ণ যেসব খাবারে চুলকানি বা এলার্জি হয় এমন খাবার বাদ দিতে হবে যোনির ফুসকুড়ি মোকাবিলায় হাত দিয়ে না চুলকানো খুবই জরুরি চুলকানোর ফলে ফুসকুড়ি বাড়ে এছাড়াও ফুসকুড়ি নিয়ন্ত্রণে ঘরে বসে এই পদ্ধতিগুলো অনুসরণ করতে পারেন ১ সাবান ডিটারজেন্ট ট্যালকম পাউডার এবং ত্বকের ক্রিমের মতো জিনিস যেগুলোতে আপনার ত্বকে জ্বালাপোড়া হয় সেগুলো ব্যবহার বাদ দিন ২ ঢিলেঢালা পোশাক এবং সুতির অন্তর্বাস পরুন সিন্থেটিক সামগ্রী এড়িয়ে চলুন ৩ ভ্যাজাইনা স্প্রে ব্যবহার করবেন না (যদি না আপনার ডাক্তার এটি সুপারিশ করেন) ৪ যোনি এলাকার শুষ্কতা রোধ করতে সুগন্ধমুক্ত ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার করুন ৫ চুলকানি কমাতে কাপড় দিয়ে চাপ দিতে পারেন ৬ আপনার যদি অ্যান্টিবায়োটিক চলে তবে সাথে সাথে প্রোবায়োটিক নিতে পারেন ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ৭ মলত্যাগের পরে সামনে থেকে পিছনে পরিষ্কার করুন মলদ্বার থেকে প্রস্রাবের রাস্তার দিকে মুছবেন না ৮ সহবাসের সময় কনডম ব্যবহার করুন ফুসকুড়ির কারণের ওপর নির্ভর করে চিকিৎসা পরিবর্তিত হয় এই ঘরোয়া প্রতিকারগুলোও উপসর্গগুলো উপশম করতে পারে আপনার যদি আগে কখনও ফুসকুড়ি বা চুলকানি না হয়ে থাকে তবে ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করে ওষুধ গ্রহণ করা ভালো প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতা হতে পারে সদ্য প্রসূতি মা ও তার সন্তানের জন্য বিপজ্জনক তাই নিজের এবং পরিবারের স্বার্থেই প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতায় আক্রান্ত হলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে প্রসবোত্তর বিষণ্ণতাকে প্রতিরোধে নিচের এই চারটি টিপসও মেনে চলতে পারেন ১ কথা বলুন আপনি আপনার অনুভূতিগুলোকে নিজের মধ্যে না রেখে আপনার বিশ্বস্ত কারো সাথে ভাগাভাগি করে নিতে পারেন তখন মনে হবে অন্যরা আপনার বিষয়গুলো শুনতে ইচ্ছুক এবংআপনি একা নন ২ একা না থাকার চেষ্টা করুন একা না থেকে বরং পছন্দের মানুষগুলোর সাথে বেশি বেশি সময় কাটান এটি আপনার একাকিত্ব দুর করে অন্যদের সংস্পর্শে যেতে সাহায্য করতে পারে বিভিন্ন ধরনের গ্রুপে যুক্ত হতে পারেন একটি গ্রুপে থাকলে অন্যান্য বিষয়গুলোতে ফোকাস করতে হয় ফলে নিজের মানসিক চাপ এমনিতেই কিছুটা হালকা হয়ে যায় নিজের বন্ধু বান্ধবী কিংবা আত্মীয়স্বজনের সাথে বেশি সময় কাটান ৩ নিজেকে জোর করে কাজে অন্তর্ভুক্ত করবেন না আপনি যদি কাজ বা চাকরির জন্য প্রস্তুত না হন এখনই তবে নিজের ওপর জোর করবেন না মনে রাখবেন এই সময়টা আপনার এবং আপনার শিশুর জন্য গুরুত্বপূর্ণ তাই প্রয়োজনে আরো কিছুদিনের জন্য কাজ থেকে দূরে থাকার চেষ্টা করুন ৪ বিশ্রাম করুন এবং শান্ত থাকুন মন ও শরীর উভয়কে ভালো রাখার জন্য রাতের ঘুম খুবই গুরুত্বপূর্ণ যদি আপনার শিশু অনেকক্ষণ জেগে থাকে তাহলে অন্য কাউকে দায়িত্ব দিন যাতে আপনি পর্যাপ্ত ঘুমাতে পারেন আপনার শিশুর যত্নের জন্যই আপনার যথেষ্ট বিশ্রাম প্রয়োজন যেভাবেই হোক মনকে শান্ত করতে হবে এমন কিছু করুন যা আপনার মানসিক চাপ ও উত্তেজনা কমাতে সাহায্য করতে পারে জন্মের পর মা ও শিশুর শারীরিক স্বাস্থ্যের প্রতি আমরা অনেক গুরুত্ব দেই তবে সাধারণত উপেক্ষিত থাকে মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের দিকটা সদ্য প্রসূতি মায়েদের অনেকেই প্রসবপরবর্তী বিষণ্ণতায় ভুগেন যা একই সাথে মা ও শিশু দুজনের জন্যই ক্ষতির কারণ হয়ে উঠতে পারে একজন সদ্য প্রসূতি মা যেন বিষণ্ণতায় না হারায় এবং মা যেন শিশুর নিবিড় যত্ন নিতে পারে–এই কারণেই প্রসবপরবর্তী বিষণ্ণতায় পরার আগেই প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা নেওয়া উচিত কয়েকটি ধাপে এটি করা যেতে পারে প্রথমত নিজেই নিজের দায়িত্ব নিন প্রসবোত্তর বিষণ্ণতার যেকোনো লক্ষণ দেখা দিলে দেরি না করে আপনার চিকিৎসকে খুলে বলুন আপনার প্রসবোত্তর বিষণ্ণতার পূর্ব ইতিহাস থাকলে আপনি কখনও বড়োরকমের বিষণ্ণতায় বা মানসিক রোগে ভুগে থাকলে এবং বর্তমানের বিষণ্ণতার যা যা লক্ষণ–সব ডাক্তারকে বললে তিনি উপযুক্ত থেরাপি এবং পরামর্শ দিতে পারবেন দ্বিতীয়ত নিজেকে প্রস্তুত রাখতে হবে আপনার শিশুর জন্মের আগেই মোটামুটি একটি কর্ম পরিকল্পনা তৈরি করুন এবং প্রয়োজনে তা লিখে রাখুন পাশাপাশি যেসব ব্যাপার আপনাকে মাথায় রাখতে হবে সেগুলো হলো প্রয়োজনীয় ডাক্তার এবং চিকিৎসা কেন্দ্রের যোগাযোগের নাম্বার জোগাড় করে রাখা শিশুকে যত্ন নেওয়ার জন্য কাউকে আগে থেকেই ঠিক করতে হবে যাতে আপনি পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে পারেন বিষণ্ণতার যেকোনো উপসর্গ দেখা দিলে আপনি ঠিক কী করবেন কাকে যোগাযোগ করবেন স্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে প্রতিদিনের ব্যায়াম করতে হবে আপনার শখের বা পছন্দের কোনো কাজ করতে হবে অবশ্যই প্রচুর ঘুমাতে হবে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ প্রিয়জনের সাথে সবসময় কথা বলুন সাথে থাকুন পরিবারে নতুন শিশুর আগমন ঘটলে স্বাভাবিকভাবেই পরিবারের জীবনযাত্রায় পরিবর্তন আসে এ সকল পরিবর্তনের সাথে নিজেকে খাপ খাইয়ে নেওয়া অনেক সময়ই খুব কঠিন মনে হতে পারে এর মাঝে প্রসবপরবর্তী বিষণ্ণতা পারিবারিক জীবনকে আরো জটিল করে তুলতে পারে তাই এ জাতীয় সমস্যা দেখা দিলে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া উচিত তাৎক্ষণিক চিকিৎসা আপনাকে দ্রুত স্বাভাবিক অবস্থা ফিরে পেতে সাহায্য করবে পরিবারে যখন কোনো নতুন সদসস্যের আগমন ঘটে তখন সবাই তাকে নিয়েই ব্যস্ত সময় কাটায় ফলে সদ্য প্রসূতি মায়ের দিকে তেমন খেয়াল অনেক সময়ই রাখা সম্ভব হয় না কিন্তু সন্তান জন্মদানের পরবর্তী সময়ে প্রসূতি মায়েদের অনেক ধরনের শারিরীকমানসিক পরিবর্তন দেখা দেয় অনেক নারীর ক্ষেত্রেই সন্তান জন্ম দেওয়ার পরপর তাদের আচরণে দুঃখবোধ কিংবা শূন্যতা অনুভব এবং অতিরিক্ত আবেগ প্রবণতা দেখা যায় যা স্বাভাবিক একটি বিষয় বেশিরভাগ নারীর ক্ষেত্রেই এর স্থায়িত্ব কয়েক দিন হয় কিন্তু যদি সন্তান জন্মদানের পর দুই সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে মন খারাপ অতিরিক্ত মেজাজ এবং অসহায়বোধ ভাব থেকে যায় তবে তিনি পোস্টপার্টাম ডিপ্রেশন বা প্রসব পরবর্তী বিষণ্ণতায় ভুগতে পারেন বিশেষত সন্তান জন্মদানের পর দেহে হরমোনের পরিবর্তনের কারণেও এই জাতীয় ডিপ্রেশন হতে পারে প্রসবপরবর্তী বিষণ্ণতার কিছু লক্ষণ হলো– অস্থির লাগা বা মেজাজ খারাপ হয়ে থাকা কোনো কারণ ছাড়াই মন খারাপ বা কান্না আসা অতিরিক্ত ঘুম হওয়া অথবা প্রচণ্ড ক্লান্ত লাগলেও ঘুম না আসা খুব কম খাওয়া কিংবা অতিরিক্ত খাওয়া নানান ব্যথা বা অস্বস্তি অনুভব হওয়া সবকিছু অতিরিক্ত মনে হওয়া এবং হতাশ লাগা নিজেকে অসহায় লাগা মনোনিবেশ করতে বা সহজ সিদ্ধান্ত নিতে না পারা যে জিনিসগুলো এক সময় উপভোগ করতেন তাতে বর্তমানে কোনো আগ্রহ না থাকা কোনো কাজে শক্তি বা অনুপ্রেরণা না পাওয়া শিশুকে বা নিজেকে আঘাত করার কথা চিন্তা করা সন্তানের প্রতি কোনো আগ্রহ কাজ না করা তার থেকে দূরে থাকা অর্থাৎ এমন মনে হওয়া যে সন্তান নিজের নয় অন্য কারোর স্মৃতির সমস্যা বা কম হওয়া অপরাধবোধে ভোগা বা নিজেকে খারাপ মা মনে হওয়া পরিবার ও বন্ধুদের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যাওয়া বা পালাতে চাওয়া কখনও কখনও প্রসবোত্তর বিষণ্ণতার লক্ষণগুলো প্রসবের পরপরই দেখা দিতে পারে আবার কখনো কখনো কয়েক মাস পরেও দেখা দিতে পারে কারো কারো ক্ষেত্রে লক্ষণগুলো এক বা দুই দিনের জন্য হয় কারো ক্ষেত্রে আবার লক্ষণগুলো ফিরে ফিরে আসতে পারে সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না দেওয়া হলে লক্ষণগুলো আরো জটিল আকার ধারণ করতে পারে প্রসবোত্তর বিষণ্ণতা একজন সদ্য প্রসূতি মা কিংবা তার নবজাতক শিশুর যত্ন নেওয়া কঠিন করে তুলতে পারে তাই এর প্রতিকার এবং চিকিৎসা খুবই জরুরি এন্ডোমেট্রিয়োসিস হলো এক ধরনের স্ত্রীরোগ জরায়ুর ভেতরের আস্তরণকে বলা হয় এন্ডোমেট্রিয়াম এন্ডোমেট্রিয়ামে অবস্থিত বিশেষ ধরনের কোষগুচ্ছ কোনো কোনো সময় জরায়ু গহ্বরের বাইরেও অবস্থান নেয় ফলে নারীদেহে বিভিন্ন রকমের জটিলতা তৈরি হয় এই অবস্থাকে এন্ডোমেট্রিয়োসিস বলে৷ একজন নারী তার জীবনকালের যেকোনো সময়ে এই রোগে ভুগতে পারেন৷ এন্ডোমেট্রিয়োসিসের লক্ষণসমূহ ব্যথাযুক্ত পিরিয়ড হওয়া এটাকে ডাক্তারি ভাষায় বলা হয় ডিসম্যানুরিয়া যৌন সহবাসের সময় কিংবা পরে ব্যথা অনুভব করা৷ প্রস্রাব করার সময় ব্যথা অনুভব করা৷ সাধারণত পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে এই ব্যথা অনুভূত হয় অতিরিক্ত রক্তক্ষরণ হওয়া কখনো কখনো পিরিয়ডের সময় অতিরিক্ত রক্ত যেতে পারে৷ অথবা দুটি পিরিয়ডের মধ্যবর্তী সময়েও ব্যাপারটা ঘটতে পারে৷ গর্ভধারণ করতে না পারা অনেক সময় গর্ভধারণে জটিলতা সংক্রান্ত চিকিৎসা করতে গেলে এন্ডোমেট্রিয়োসিস ধরা পড়ে৷ এছাড়াও দুর্বলতাবোধ ডায়রিয়া কোষ্ঠকাঠিন্য বমি বমি ভাব বিশেষত পিরিয়ড চলাকালীন অবস্থায় হতে পারে৷ যাদের এন্ডোমেট্রিয়োসিস হবার উচ্চঝুঁকি আছে মা বোন কন্যা–এমন কারো এই রোগটি থেকে থাকলে ৩০ বছর বয়সের পরে যদি কোনো নারী তার প্রথম বাচ্চার জন্ম দিয়ে থাকেন জরায়ুতে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা থাকলে স্বাভাবিক সময়ের আগেই বারবার পিরিয়ড শুরু হলে পিরিয়ড অনেকদিন ধরে চললে অথবা পিরিয়ড চলাকালীন সময়ে অনেক বেশি রক্তক্ষরণ হলে এন্ডোমেট্রিয়োসিস হলে পরবর্তীতে যে সমস্যাগুলো হতে পারে গর্ভধারণে জটিলতা কখনই গর্ভধারণ করতে না পারা ক্যান্সার কখন চিকিৎসকের পরামর্শ নেবেন উল্লেখিত লক্ষণগুলো মিলে গেলে যতদ্রুত সম্ভব একজন চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷ রোগের শুরুতেই ধরা পড়লে আপনার আরোগ্য লাভ দ্রুত হবে৷ পলিসিস্টিক ওভারি সিনড্রোম ( Polycystic Ovary Syndrome) বা সংক্ষেপে PCOS হলো নারীদের একটি হরমোনজনিত রোগ৷ একজন নারী তার সন্তানধারণ সময়কালের অর্থাৎ পিরিয়ড হওয়ার পর থেকে মেনোপোজ হওয়ার সময় পর্যন্ত যেকোনো সময়ে এই রোগে আক্রান্ত হতে পারেন যা তার সন্তানধারণ করার ক্ষমতা বা ফারটিলিটিকে বাধাগ্রস্থ করতে পারে৷ PCOS হওয়ার জন্য দায়ী হরমোনগুলো এন্ড্রোজেন এই হরমোনটি পুরুষদের হরমোন নামে পরিচিত৷ কিন্তু PCOSএ আক্রান্ত নারীদের দেহে এই হরমোনটি উচ্চমাত্রায় পাওয়া যেতে পারে৷ ইনসুলিন এই হরমোনটি আমাদের রক্তের চিনির পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করে থাকে৷ আপনার যদি PCOS হয়ে থাকে তবে ইনসুলিন যেভাবে আপনার দেহে কাজ করার কথা সেভাবে করবে না৷ যার কারণে অনেকের টাইপ২ ডায়াবেটিস দেখা দিতে পারে৷ প্রোজেস্টেরন এটি নারীদের দেহে উচ্চমাত্রায় পাওয়া যায়৷ কিন্তু একজন নারী যদি PCOSএ আক্রান্ত হয়ে থাকেন তবে প্রোজেস্টেরন তার দেহে যেভাবে নিঃসরিত হবার কথা সেভাবে হবে না৷ যার ফলে একজন নারী তার পিরিয়ড মিস করতে পারেন অথবা পিরিয়ডকালীন সময়ে বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় পড়ে যেতে পারেন৷ PCOS আক্রান্ত নারীরা যেসব জটিলতার সম্মুখীন হতে পারেন গর্ভধারণে জটিলতা ডায়াবেটিস মেটাবোলিক সিনড্রোম যেমন–হৃদনালি সংক্রান্ত রোগে আক্রান্ত হওয়া রক্তে ট্রাইগ্লিসারাইড কোলেস্টেরল ইত্যাদি বেড়ে যাওয়া রক্তচাপ বাড়া ইত্যাদি বিষণ্ণতা অনুভব করা উদ্‌বেগ জরায়ু থেকে রক্তপাত হওয়া ঘুমের সমস্যা৷ যকৃতে প্রদাহ PCOSএর সম্ভাব্য লক্ষণসমূহ ১ শরীরের বিভিন্ন অংশে অপ্রয়োজনীয় চুল গজানো৷ যেমন–মুখমণ্ডল স্তন হাত কিংবা পায়ের পাতায় ২ প্রতিনিয়ত চুল পড়া বা চুলের ঘনত্ব হালকা হতে থাকা৷ ৩ ত্বক অতিরিক্ত তেলতেলে হওয়া বা ব্রণ হওয়া ৪ শরীরের বিভিন্ন অংশের ত্বক কালো হয়ে যেতে থাকা যেমন–হাত কিংবা স্তনের নিচের ত্বকে গলার পেছনের অংশে কুঁচকিতে কালো দাগ ইত্যাদি৷ ৫ ঘুমে সমস্যা হওয়া কিংবা সারাক্ষণ দুর্বলতা অনুভব করা৷ ৬ মাথাব্যথা৷ ৭ পিরিয়ডকালীন সময়ে অতিরিক্ত রক্ত যাওয়া৷ ৮ অনিয়মিত পিরিয়ড হওয়া৷ ৯ গর্ভধারণে সমস্যা হওয়া৷ ১০ ওজন বাড়তে থাকা৷ কখন আপনি একজন ডাক্তারের পরামর্শ নেবেন উল্লেখিত লক্ষণের সবগুলো অথবা কয়েকটি লক্ষণ যখন আপনি দেখতে পাবেন দেরি না করে একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিন৷ সঠিক চিকিৎসা এবং জীবনযাত্রার ধরণ পরিবর্তনের মাধ্যমে এ রোগ থেকে সুস্থ হওয়া সম্ভব৷ এজন্য যত দ্রুত ডাক্তারের সহায়তা নিবেন আপনার সুস্থ হওয়ার সম্ভাবনা ততই বাড়বে৷ ডাক্তারের সাথে যোগাযোগের সময় আপনার সমস্যাগুলো বলার সাথে সাথে আপনার পরিবারে কারো এই ধরনের সমস্যা আছে কি না অথবা সরাসরি PCOS আছে কি না সেই তথ্যগুলো দিন৷ তাতে ডাক্তারের পক্ষে আপনার রোগ নির্ণয় অধিকতর সহজ হয় নারীদেহে এন্ড্রোজেনের বা পুরুষ যৌন হরমোন আধিক্যের কারণে যে সমস্যা দেখা দেয় সেটিকে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম বলা হয়ে থাকে বালিকা ও নারীদের প্রজননক্ষম সময়ে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয় বাংলাদেশে এ রোগের হার ২৫ শতাংশের কাছাকাছি হবে বলে ধরে নেওয়া হয় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের প্রভাবে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে থাকে যেমন ক অনিয়মিত মাসিক খ অতিরিক্ত রক্তস্রাব গ মুখে ও শরীরে অত্যধিক লোম (পুরুষালি) ঘ ব্রণ মুখে ও শরীরের অন্যান্য অংশে আরও কিছু শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে তলপেটে ব্যথা মকমলের মতো কালো ত্বক (ঘাড় বগল ইত্যাদি জায়গায়) বন্ধ্যত্ব রোগীদের টাইপ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় এদের অনেকেই দৈহিক স্থূলতায় আক্রান্ত হয় নাকডাকা ও ঘুমের সময় হঠাৎ করে শ্বাস বন্ধ হওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীনতা ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে জিনগত ত্রুটি আছে এমন কিশোরীর দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাওয়া খুব কম শারীরিক শ্রম সম্পাদন করা ও ঝুঁকিপূর্ণ খাবার খাওয়া ইত্যাদি এ রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি করতে উদ্দীপ্ত হয় যার পেছনে পিটুইটারি গ্রন্থির অতিরিক্ত এলএইচ (LH) নিঃস্বরণ ও দেহে ইনসুলিন রেজিস্ট্রেন্সের উপস্থিতিই কারণ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম নাম হওয়ার প্রধান কারণ হল ডিম্বাশয়ে বিভিন্ন বয়সি বিভিন্ন আকারের বিভিন্ন সংখ্যার সিস্ট থাকবে রোগ শনাক্তকরণ নিম্নলিখিত ক্রাইটেরিয়ার যে কোনো দুটির উপস্থিতি আবশ্যক নারীদেহে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন হরমোন উপস্থিতি অনিয়মিত ঋতুস্রাব ডিম্বাশয়ে সিস্ট পরীক্ষানিরীক্ষা সিরাম টেস্টোস্টেরন এফএসএইচ পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম ওজিটিটি চিকিৎসা জীবনযাত্রা ব্যবস্থাপনা চিকিৎসার শুরুতেই খাদ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে রোগীর দৈহিক ওজন কাংখিত মাত্রায় পৌঁছতে সাহায্য করবে বিপাকীয় প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটাবে যাতে করে ইনসুলিন রেজিস্ট্রেন্স কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে আদর্শ জীবনযাপন ব্যবস্থাপনা রোগীর হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাবে এ রোগীদের খাদ্য তালিকায় শর্করার আধিক্য কম থাকবে শাকসবজি (আলু বাদে) রঙিন ফলমূল ও আমিষজাতীয় খাদ্য প্রাধান্য পাবে দৈহিক ওজন বা বিএমআই বিবেচনায় রেখে শারীরিক শ্রমের ব্যবস্থা করতে হবে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত নারীদের অধিকাংশই এ সমস্যার শারীরিক লক্ষণগুলো খুব দ্রুত বুঝতে পারেন না কেউ কেউ লক্ষণগুলো বুঝতে পারলেও সংকোচ বোধের কারণে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে দেরি করেন যেহেতু রোগটির ব্যাপকতা ও সুদূরপ্রসারী স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে তাই প্রজননক্ষম বয়সের সব নারীকে তার এ সমস্যা আছে কিনা জানার জন্য হরমোন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি স্তন ক্যানসারের নানা ধরনের লক্ষণ রয়েছে স্তন কিংবা বগলে চাকা অনুভব করা স্তনের কোথাও ব্যথা অনুভবসহ বিভিন্ন উপসর্গ দেখা দেয় নারীরা স্তন ক্যানসারে আক্রান্ত হন সবচেয়ে বেশি এ জন্য এ ক্ষেত্রে তাদের সচেতনতা বেশি প্রয়োজন সচেতন থাকলে স্তন ক্যানসার থেকে বাঁচা যায় আক্রান্ত হওয়ার পরও ঠিকমতো চিকিৎসা নিলে এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় বয়স ৪০ বছরের বেশি হলে চিকিৎসকের পরামর্শে বছরে একবার অন্তত সব নারীকে ম্যামোগ্রাম করাতে হবে রুটিন পরীক্ষা তো করাতেই হবে পরিবারের যদি কারও আগে থেকে স্তন ক্যানসারের ইতিহাস থেকে থাকে তা হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ মতো বিভিন্ন টেস্ট করে নিতে হবে স্তন ক্যানসার কেন হয় প্রথমত অজানা কারণে দ্বিতীয়ত ৩৫ বছর বয়সে প্রথম সন্তান নিলে তাদের মধ্যে স্তন ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায় তৃতীয়ত জন্মবিরতিকরণ পিল টানা পাঁচ থেকে ছয় বছর খেয়ে থাকলে যারা কখনো বাচ্চাকে বুকের দুধ পান করাননি তাদের ক্ষেত্রে হওয়ার সম্ভাবনা আছে কীভাবে বুঝবেন স্তনের মধ্যে চাকা অনুভব করা কখনো ব্যথা থাকতে পারে আবার নাও থাকতে পারে স্তনের ত্বক যদি কুঁচকে যায় কমলালেবুর মতো প্রথমত দায়ী আমাদের জীবনযাত্রার পরিবর্তন আজকাল জাঙ্কফুড খাবারে মানুষ অভ্যস্ত হয়ে গেছে শারীরিক পরিশ্রম না করার কারণে অতিরিক্ত স্থূলতায় ভুগছে অতিরিক্ত স্থূলতা breast Cancerএর অন্যতম প্রধান কারণ বয়সের সঙ্গে নারীদের জীবদ্দশায় শরীরের স্বাভাবিক হরমোনের তারতম্যের কারণে মুখগহ্বরে বেশ কিছু স্বল্প মেয়াদি পরিবর্তন আসে সঠিক পরিচর্যার অভাবে এখান থেকে বড় ধরনের জটিলতার আশঙ্কাও রয়ে যায় যেমন বয়ঃসন্ধিকাল ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের আধিক্যের কারণে মাড়িতে স্বাভাবিকের তুলনায় রক্ত প্রবাহ বেশি থাকে ফলে সামান্য কিছুতেই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার প্রবণতা থাকে মাড়ি ফুলে যেতে পারে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে ডেন্টাল ক্যারিজের প্রবণতাও বাড়তে পারে মেনস্ট্রুয়েশন পিরিয়ড পিরিয়ডের সময়ে রক্তে প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে মাড়ি উজ্জ্বল দেখায় ও ফুলে যায় মাড়িতে ব্যথাসহ ছোট এপথাস আলসারসহ কিছু ঘা বা ক্ষত হতে পারে লালা গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে মাসিকের ২ থেকে ৩ দিন আগে উপসর্গগুলো শুরু হলেও কয়েকদিনে ভালো হয়ে ওঠে জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবন প্রোজেস্টেরন সম্পর্কীয় ওষুধে মাড়িতে নানা ধরনের প্রদাহ দেখা দিতে পারে বিশেষ করে ওষুধ নেওয়ার প্রথম কয়েক মাস ইস্ট্রোজেন সম্পর্কীয় ওষুধ শরীরে প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেন কমিয়ে কৃত্রিম ইস্ট্রোজেন বাড়িয়ে দেয় ফলে মুখের একমাত্র নড়াচড়াক্ষম জয়েন্ট টেম্পেরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্টে নানা সমস্যার কারণে মুখ খুলতে খাবার চর্বণে এমনকি মুখ নাড়াচাড়া করতে কষ্ট হতে পারে গর্ভকাল গর্ভাবস্থায় হরমোনের ব্যাপক তারতম্য ঘটে স্পর্শকাতর এ সময়ে প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যাওয়াতে মুখের মধ্যকার জীবাণু সক্রিয় হয়ে ওঠে গর্ভাবস্থার ২ থেকে ৮ মাসের মধ্যে দাঁতে গর্ত দাঁত শিন শিন করা মাড়ি ফুলে রক্ত পড়া খুব সাধারণ মুখ পরিষ্কারে অনিহা বা বমি বমি ভাবের জন্য মুখগহ্বর রোগের অভয়ারণ্য হয়ে ওঠে অন্যদিকে মুখের রোগ থেকে অপরণীত গর্ভপাত ও গর্ভের শিশুর মানসিক ও শারীরিক জটিলতা হতে পারে প্রথম ও শেষ তিন মাস চিকিৎসা গ্রহণেও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন জরুরি মেনোপজকাল নারীদের মেনোপজে মুখে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা খুব সাধারণ এর সঙ্গে যোগবাঁধে অন্যরোগ মুখের স্বাদ কমে যাওয়া মুখে জ্বালা পোড়া করা অল্পতে ঝাঁল অনুভূতি ঠান্ডা বা গরম খাবারে অতিসংবেদনশীলতা মুখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে নানা পরিবর্তন হতে পারে এসময়ে ক্যারিজ বা দাঁতক্ষয় মাড়ি রোগ চোয়ালের হাড় ক্ষয় থেকে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে করণীয় প্রত্যেকদিন নিয়ম মেনে সকালে নাশতার পর ও রাতে ঘুমানোর আগে নরম টুথ ব্রাশ ও ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে দাঁতের পাঁচটি পৃষ্ঠ পরিষ্কার বিশেষ প্রয়োজনে জীবাণু ধ্বংসকারক মাউথ ওয়াশ ব্যবহার দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থানে ডেন্টাল ফ্লস দিয়ে পরিষ্কার সমস্যা বা উপসর্গ না হলেও ছয়মাস পর পর অনুমোদিত ডেন্টাল চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যাতে রোগের প্রদুর্ভাব শুরুতেই ধরা পড়ে স্বাস্থ্যবান্ধব খাবার গ্রহণ গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে মুখ পরিষ্কার মেনোপোজে গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন থেরাপি সন্তান নেওয়ার সিদ্ধান্তটা নারী ও তার সঙ্গীর তবে সময়মতো সন্তান না নিলে পরবর্তী সময়ে অনেক জটিলতা দেখা দেয় একজন প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষের শরীরে প্রতিদিন প্রায় ৩০ কোটি শুক্রাণু তৈরি হয় একটি মেয়েশিশু জন্মের সময়ে নির্দিষ্টসংখ্যক ডিম্বাণুগুলো নিয়ে জন্মে প্রতি মাসের মাসিক চক্রে একটি করে ডিম্বাণু পরিপক্ব হয় এর সঙ্গে আরও কিছু ডিম্বাণু এই প্রক্রিয়ায় পরিপক্ব হওয়ার আগেই নষ্ট হয়ে যায় ফলে বয়সের সঙ্গে সঙ্গে ডিম্বাণুর সংখ্যা কমতে থাকে জন্মের পর নারীদের শরীরে নতুন কোনো ডিম্বাণু তৈরি হয় না তাই বয়স বেড়ে চলার সঙ্গে সঙ্গে প্রজনন ক্ষমতা কমতে থাকে একটি মেয়েশিশুর জন্মের সময় প্রথম দিকে ডিম্বাশয়ে ডিম্বাণু পরিমাণ থাকে ১০ থেকে ২০ লাখ ধীরে ধীরে সেই শিশু প্রাপ্তবয়স্ক হয় বা মাসিকের সময় হয় তখন মেয়েদের ডিম্বাণুর পরিমাণ হয় ৪০ হাজার মেয়েরা এখন নিজের ক্যারিয়ারের জন্য কিছুটা দেরিতে বিয়ে করছে তবে প্রথম সন্তানটি ২৫ বছর বয়সের আগে নিলে ভালো ৩০ বছর পেরিয়ে গেলে প্রজননক্ষমতা প্রায় ৫০ শতাংশ কমে যায় ৩৫ বছর পর ডিম্বাণুর সংখ্যা কমে যায় বেশি যদি মায়ের বয়স বেশি হয়ে যায় যদি প্রথম সন্তান জন্মদান করে ৩২এ পড়ে তা হলে জন্মগত ত্রুটিযুক্ত এবং ডাউন সিনড্রোম বেশি হয় ৩২ বছর বয়স থেকেই উর্বরতা কমতে শুরু করে ৩৭ বছর বয়সে গিয়ে তা আরও কমতে শুরু করে বেশি বয়সে গর্ভধারণের কারণে উচ্চরক্তচাপ ও গর্ভকালীন ডায়াবেটিসের মতো ঝুঁকি বাড়তে শুরু করে ৪০ বছরের বেশি বয়স্কদের গর্ভপাতের ঝুঁকি বেশি থাকে নানা ধরনের জটিলতা তখন তৈরি হয় কিশোরীদের বয়ঃসন্ধিকালে শরীর ও মনে নানা ধরনের পরিবর্তন ঘটে এ সময় চিন্তাচেতনার সঙ্গে সঙ্গে শারীরিকভাবে মানসিকভাবে বেড়ে উঠতে থাকে তারা এটি মূলত কৈশোর ও যৌবনের একটা মধ্যবর্তী পর্যায়ে হয়ে থাকে ১০১৩ বছরের মধ্যে যে কোনো সময় মেয়েদের বয়ঃসন্ধিকাল শুরু হয় এ সময়ে নিজের জীবন পছন্দঅপছন্দ দৃষ্টিভঙ্গি গড়ে ওঠে এ সময় কিশোরীরা স্বাধীনভাবে কিছু ভাবতে শুরু করে সিদ্ধান্ত নিতে শুরু করে হরমোনের প্রভাবে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন দেখা যায় শরীরে কখনো রাগ করে কখনো আবার খাওয়াদাওয়া বন্ধ করে দেয় কখনো আবার খুব বেশি খায় ঠাণ্ডা মেজাজে থাকে ওই সময়টাতে বাবামায়ের বা অভিভাবককে বিশেষ ভূমিকা পালন করতে হয় কারণ তাদের আচারআচরণ অনেক ধরনের পরিবর্তন দেখা যায় তাদের বিশ্বাসের জায়গাটা এ সময় সবার আগে অর্জন করতে হবে তার পর বুঝিয়ে ধীরে ধীরে বলতে হবে তাদের ওপর হাত তোলা কিংবা খারাপ আচরণ করা যাবে না বয়ঃসন্ধিকালে মেয়েদের প্রজনন ক্ষমতা বিকাশ হয় তাই অবশ্যই কীভাবে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলতে হয় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন থাকতে হয় এটি যেমন স্কুলের দায়িত্ব সেই রকম বাবামায়েরও দায়িত্ব বয়ঃসন্ধিকালীন সবার আগে কিশোরীদের শেখাতে হবে কীভাবে পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন থাকতে হয় কারণ হাইজিন মেইনটেইন না করলে মারাত্মক সংক্রমণ দেখা দেয় শরীরে এছাড়া মাসিক চক্র ব্যবস্থাপনা সময় খুবই জরুরি বিষয় কারণ মাসিকের সময় ন্যাপকিন প্যাড বা কাপড় ব্যবহার করে অবশ্যই পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখতে হবে স্যানিটারি ন্যাপকিন ওয়ান টাইম ব্যবহার করতে হয় প্রতি ৬ ঘণ্টা পর পর পরিবর্তন করতে হয় কাপড় ব্যবহার করলে অবশ্য ভালোমতো পরিষ্কার করে শুকনা কাপড় ব্যবহার করতে হবে যদি ঠিকমতো এই ব্যবস্থাপনাগুলো না করা হয় তা হলে বিভিন্ন ধরনের সংক্রমণ হতে পারে এ সংক্রমণের ফলে মেয়েদের জরায়ু ফেলোপিয়ান টিউব ব্লকসহ নানাবিধ জটিলতা তৈরি করে প্রজনন ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যেতে পারে এই সময়ে বেশি বেশি পুষ্টিকর খাবার সমৃদ্ধ খাবার ভিটামিন সি জাতীয় খাবার খেতে হবে কৈশোর বয়সটা শরীর গঠনের জন্য সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময় এ সময সুষম খাবার ও সঙ্গে এক্সারসাইজ এবং নিয়মমতো ৭ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো দরকার গর্ভ নয় অথচ নিজেকে গর্ভবতী মনে করা এ রকম ঘটনার মুখোমুখি আমাকে বেশ কয়েকবার হতে হয়েছে মাসিক বন্ধ অনেক কারণেই হয়ে থাকে তার মধ্যে প্রেগন্যান্সি অন্যতম কারণ কোনো কোনো নারীদের হরমোনের তারতম্যের কারণে মাসিক বন্ধ হয়ে থাকে তখন কেউ কেউ নিজেকে গর্ভবতী মনে করেন এবং মানসিক পরিবর্তন হয়ে থাকে আর এই কারণে অনেকের গর্ভের লক্ষণগুলো যেমন বমির ভাব হয়ে থাকে এমনকি অনেকে বমিও করে থাকেন ধীরে ধীরে পেট বড় হতে থাকে বিশেষ করে ওজন যাদের বেশি অনেকে বাচ্চার নড়াচড়াও বুঝেন বলে জানান এসবই ঘটে মানসিক পরিবর্তনের জন্য তাদের পেটে হাত দিয়ে আমরা সহজে জরায়ু শনাক্ত করতে পারি না তাদের হিসাবে ১০ মাস হয়ে গেলে অনেকে ব্যথাও অনুভব করে থাকেন আজকাল হাতের নাগালে আলট্রাসনোগ্রাফি করার সুযোগ থাকায় অতি সহজেই আমরা বলতে পারি যে তিনি গর্ভবতী নন গর্ভকালীন নারীর শরীরে প্রোজেস্টেরন এবং ইস্ট্রোজেন নামক দুইটি হরমোন বৃদ্ধি পায়এ হরমোনগুলোর কিছুটা নেগেটিভ এফেক্ট মনের ওপর পড়ে প্রথম তিন মাস শরীরটা একটু দুর্বল থাকে বমি বমি ভাব জ্বর জ্বর লাগা খাবারে গন্ধ সর্বোপরি পরিবারে নতুন সদস্যকে কীভাবে ভালোভাবে লালনপালন করা যাবে নিয়ে চিন্তা ভাবনা মাথায় চলে আসে তাই গর্ভকালীন এ সময়টায় মানসিক স্বাস্থ্যের দিকে গুরুত্ব দিতে হবে মায়ের মানসিক স্বাস্থ্যের প্রভাব গর্ভস্থ শিশুর ওপর অনেকটাই পড়ে এবং পরবর্তীতে শিশুর মানসিক স্বাস্থ্য গড়ে ওঠার ক্ষেত্রেও এর ভূমিকা রয়েছে গর্ভকালীন সময়ে সুস্থ বাচ্চা এবং সুস্থ মায়ের জন্য মায়ের খাবার চেকআপ যেমন গুরুত্বপূর্ণ তেমনি মানসিক স্বাস্থ্য ঠিক রাখাটাও গুরুত্বপূর্ণ ▶ এই সময় মায়ের মানসিক স্বাস্থ্য ভালো রাখার দায়িত্ব তার স্বামীর পরিবারের সমাজের মা যদি ওয়ার্কিং লেডি হন তাহলে চাকরির জায়গার পরিবেশ গর্ভবতীর অনুকূলে থাকতে হবে সবাই যেন মায়ের প্রতি সহানুভূতি সহমর্মি থাকে এবং তাকে সাহায্য করার মানসিকতা পোষণ করেন ▶ এ সময়টায় অল্প পরিমাণে বারবার খাওয়ার চেষ্টা করবেন যেসব খাবার সহজে হজম হয় এবং পুষ্টির জোগান দেয় তা বুঝে খেতে হবে অনেকক্ষণ না খেয়ে থাকলে ব্রেইনে গ্লুকোজের পরিমাণ কমে যাবে এবং মেন্টাল ইরিটেশন হবে অল্পতেই মন খারাপ হবে ▶ গর্ভবতী পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করবেন সামান্য পানিস্বল্পতা আপনার ডিপ্রেশনের কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে ▶ প্রতিদিন অন্তত রাতে ৮ ঘণ্টা এবং দিনে ২ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করবেন এছাড়া দিনের মধ্যে যে কোনো একটা সময় বেছে নিবেন রিলাক্স করার জন্য নিজের সঙ্গে নিজেই সময় কাটানোর জন্য এ সময়ে আপনি নিজের জীবনের সুন্দর মুহূর্তগুলো নিয়ে ভাববেন এবং চেষ্টা করবেন গর্ভস্থ ফুটফুটে শিশুটির মুখ চোখে ভাসানোর জন্য তাকে নিয়ে সুন্দর সুন্দর প্ল্যান করবেন ▶ হালকা ব্যায়াম ইয়োগা আর মাঝে মাঝে কিছু হাসির নাটক সিনেমা দেখতে পারেন কারও গান শুনতে ভালো লাগলে এটা আপনার মনকে ভালো রাখতে সাহায্য করবে ▶ প্রতিদিন একবার খোলা আকাশের নিচে কিছু সময়ের জন্য হলেও কাটানোর চেষ্টা করবেনহতে পারে সেটা পার্ক কিংবা আপনার বাসার ছাদ ▶ ডেলিভারির সময়টা নিয়ে অনেকের মধ্যে ভীতি কাজ করে এবং টেনশন হয়এটা নিয়ে আপনি আপনার সব ভয়ের কথা এবং প্রশ্ন ডাক্তারকে খুলে বলতে দ্বিধা করবেন না ডাক্তার অবশ্যই আপনার এই ভীতি দূর করতে সাহায্য করবেন কোনো ধরনের জন্মবিরতিকরণ পদ্ধতি ছাড়া স্বামীস্ত্রী যদি পূর্ণ এক বছর একসঙ্গে বসবাসের পরও সন্তান ধারণে ব্যর্থ হন তাকে বন্ধ্যত্ব (ইনফার্টিলিটি) বলা হয় বন্ধ্যত্ব দুই ধরনের প্রাইমারি— যাদের কখনো সন্তান হয়নি সেকেন্ডারি— যাদের আগে গর্ভধারণ হয়েছে কিন্তু পরে আর হচ্ছে না কারণ হরমোনের কারণেও বন্ধ্যত্ব হতে পারে যেমন থাইরয়েডের সমস্যা যৌনবাহিত রোগের জন্য মেয়েদের প্রজননের ক্ষতি হয় ওভারিয়ান চকোলেট সিস্ট এন্ডোমেট্রিওসিসের কারণেও হতে পারে বয়স মানসিক চাপ খাদ্যাভ্যাস পরিবেশগত প্রভাব ক্যানসারসহ নানা কারণে ডিম্বাণুর সংখ্যা আশঙ্কাজনক হারে কমে যাওয়া—এসব কারণেও বন্ধ্যত্ব হতে পারে লক্ষণ গর্ভধারণ না হওয়া বন্ধ্যত্বের প্রধান লক্ষণ সাধারণত অন্য কোনো সুস্পষ্ট উপসর্গ না থাকলেও নারীদের অনিয়মিত মাসিক হতে পারে মাসিক না হওয়ার কারণ যদি ডিম্বাশয় থেকে পরিপক্ব ডিম্বাণু না হয় বয়স বেশি বেড়ে গেলে ধূমপান অ্যালকোহল অতিরিক্ত ওজন যৌনবাহিত সংক্রমণ জরায়ুতে টিউমার ইত্যাদি কারণে অথবা কোনো কেমোথেরাপি নিয়েছেন অ্যান্টিসাইকোটিক ওষুধের কারণে মাসিক অনিয়মিত হতে পারে পুরুষের বন্ধ্যত্বের কারণ ওজন বেড়ে গেলে অ্যালকোহল বিভিন্ন ধরনের ভারি ধাতু বায়ুদূষণের এক্সপোজার হরমোনের ভারসাম্যহীনতা দীর্ঘ সময় ধরে ল্যাপটপে কাজ করলেও হতে পারে রোগ নির্ণয় করার জন্য পরীক্ষা রক্ত পরীক্ষার মাধ্যমে বিভিন্ন ধরনের হরমোনের টেস্টগুলো ব্লাড সুগার সঙ্গে আল্ট্রাসনোগ্রাম করে কোনো ধরনের সমস্যা আছে কিনা দেখা পুরুষদের জন্য সিমেন অ্যানালাইসিস করে শুক্রাণু কার্যকর ঠিক আছে কিনা বা সংখ্যা আকারপ্রকৃতি সব দেখা হয় প্রথমে স্বামীস্ত্রীর দুজনকে একসঙ্গে বসে কাউন্সেলিং করতে হবে কিছু কিছু চিকিৎসা দরকার পড়ে কিছু ক্ষেত্রে সার্জারি করতে হতে পারে প্রতিরোধ সবাইকে ধূমপান ত্যাগ করতে হবে অ্যালকোহল তামাক এগুলো পরিহার করতে হবে নিয়মিত ব্যায়াম ও স্বাস্থ্যসম্মত খাদ্যাভাসে বেশি করে তুলতে হবে নিজেকে যে প্রেগনেন্সিতে মায়ের মৃত্যু হার ও মায়ের অসুস্থতা ও বাচ্চার মৃত্যু এবং বাচ্চার অসুস্থতা যদি বেড়ে যায় সেগুলোকে আমরা বলি হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি আমাদের সাধারণত অন্তঃসত্ত্বা নারীদের ২০ ভাগই হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি সুতরাং যদি এটাকে ভালোভাবে একটু বিশেষভাবে গুরুত্ব দিলে মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে যাবে গর্ভধারণে উচ্চঝুঁকিতে কারা যাদের বয়স অনেক বেশি হয়ে গেছে ত্রিশের উপরে যদি বয়স হয়ে যায় সেটাও কিন্তু প্রেগনেন্সি হয় তাতেও কিন্তু সেটা হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি কারণ নরমালি ২০২৯ বছর বয়স পর্যন্ত এটা পারফেক্ট টাইম বাচ্চা প্রেগনেন্সি হওয়ার সুতরাং বয়স যদি বেশি হয়ে যায় সেটা হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি অথবা কোন নারীর উচ্চতা যদি অনেক কম থাকে ৫ ফিটের নিচে থাকে তাহলেও দেখা যায় সেটাও হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি তাতে মায়ের মৃত্যুও বাড়তে পারে এবং ডেলিভারিতে কমপ্লিকেশন হতে পারে তাছাড়া আরো কতগুলা যেমন বিএমআই বেশি হওয়া বিএমআই নরমালি ২২২৪ থাকে তাহলে সেটা ভালো যদি দেখা যায় বিএমআই ২৫ এর উপরে হয়ে গেছে ৩০ এর উপরে হয়ে গেছে তখনও সেটা হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি আর কতগুলো প্রেগনেন্সি ডিজিজ আছে যেমন প্রিএক্লামশিয়া এক্লামশিয়া এনিমিয়া ডায়াবেটিস এগুলো অনেক সময় প্রেগনেন্সিতে হয় অনেক সময় দেখা যায় রক্তক্ষরণ হয় অথবা আগে যদি তার সিজারিয়ান সেকশন থাকে অথবা তার যদি বার বার বাচ্চা নষ্ট হয় সেইগুলোও হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি তাছাড়া কতগুলো মেডিকেল ডিজওয়াডার আছে যেমন কিডনি ডিজিজ হার্ট ডিজিজ লিভার ডিজিজ এগুলো কিন্তু হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি তাছাড়া কতগুলো অপারেশন আছে যেমন জরায়ুতে টিউমার হলো তারপর টিউমারগুলো আমরা অপারেশন করি মায়মেকটমি করি সেটাও হাই রিস্ক প্রেগনেন্সি অথবা দেখা যাচ্ছে বাচ্চা হওয়ার সময় যে পানি ভেঙে গেল পানি ভাঙলে কি হলো নাড় বের হয়ে যায় বাচ্চার নাড় বের হয়ে যায় অথবা হাত বের হয়ে যায় এগুলাতেও কিন্তু মায়ের এবং বাচ্চার মৃত্যুহার বেশি হয় উচ্চঝুঁকি প্রতিরোধে জেনে নিন করণীয় বাচ্চা হওয়ার আগেই যদি ওই দম্পতি বা একজন নারী চিকিৎসকের কাছে আসলে তার বিষয়ে কয়েকটি পর্যবেক্ষণ করা হয় ডায়াবেটিস হৃদরোগ অথবা টিউবারকোলসিস অথবা কোনো ধরণের রোগ থাকলে সেইগুলোকে কন্ট্রোল করতে হবে এসব রোগীদের প্রতি আমাদের পরামর্শ আগে ওই রোগের আমরা তাকে বলবো আপনি প্রেগনেন্সি নেন অথবা কোন মায়ের যদি প্রিভিয়াসলি কোন কনজিনিটাল এনোমেলি চাইল্ড থাকে তাদেরকেও আমরা স্ক্রীনিং করবো সেটাকে বলে প্রিকনসেপশনাল কাউন্সিলিং এখন আমাদের দেশে খুবই প্রিকনসেপশনাল কাউন্সিলিং হচ্ছে কারণ কি এটা হলো বাচ্চা হওয়ার আগে তার এক্সামিনেশন তার হিস্ট্রি হার এক্সামিনেশন চেকআপ করা তারপর কি হলো যখন একটা মা প্রেগনেন্ট হলো সে কিন্তু অবশ্যই এন্টিনেন্টাল চেকআপে আসবে এন্টিডেটাল চেকআপে যখন আসে তখনই তার এনিমিয়া ধরতে পারি ডায়াবেটিস ধরতে পারি তার প্রিএকলামশিয়া আছে কিনা সেইগুলোও ধরতে পারি তাছাড়া বাচ্চাটার গ্রোথ ঠিকমতো হচ্ছে কিনা সেইগুলোও আমরা ধরতে পারি এখন আমি বলবো ডেলিভারি ডেলিভারির সময় তার ডেলিভারি অবশ্যই অবশ্যই হাসপাতালে ডেলিভারি করাবে হাসপাতালে ডেলিভারি করালে যদি দেখা যায় বাচ্চার কোনো ডিসট্রেস হচ্ছে সেটা ডাক্তাররা অবশ্যই ধরে ফেলে এবং তাতেও বাচ্চার মৃত্যু হার কমে যায় অনেক সময় ডেলিভারির পরে দেখা যায় সিবিআর বিøডিং হয় ওনারা যদি হাসপাতালে ডেলিভারি করে তাতেও কিন্তু এই রক্তক্ষরণ কমে আসে সুতরাং আমরা কি করবো প্রিকনসেপশনাল কাউন্সিলিং এন্টিনেটাল কাউন্সিলিং ইন্টারনেটাল কাউন্সিলিং এগুলো কউন্সিলিং করে তাদের যদি ঠিকমতো আমরা ম্যানেজ করতে পারি তাহলে দেখা যাবে মাতৃ ও শিশুমৃত্যুর হার অনেকাংশে কমে গেছে সুতরাং আপনারা সবাই এলার্ট থাকবেন যেন প্রিকনসেপশনাল কাউন্সিলিং প্রেগনেন্সিতে চেকআপ ডেলিভারির সময় চেকআপ সবকিছু যেন করে আমরা আমাদের মাতৃমৃত্যু ও শিশুমৃত্যুর হার কমাতে পারি অনেকেই মনে করেন জরায়ু শুধুমাত্র সন্তান জন্মদানের কাজে লাগে এ ধারণা সঠিক নয় জীবনের কয়েকটি পর্যায়ে জরায়ুর বিশেষ যত্ন নেওয়া প্রয়োজন এর মধ্যে মাসিকের সময় সহবাসের সময় গর্ভকালীন সময় এবং মেনোপজের আগে ও পরে জরায়ু পরিচর্যার আগে এ সমস্যা সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা থাকতে হবে তা না হলে ভুল পদক্ষেপে জটিলতা বাড়তে পারে মাসিকের সময় অতিরিক্ত রক্তস্রাব তলপেটে ব্যথা নির্ধারিত সময় পার হয়ে যাওয়ার পরও মাসিক না হওয়া দুর্গন্ধযুক্ত সাদাস্রাব পুঁজযুক্ত ঋতুস্রাব সহবাসের পর রক্ত বের হওয়া মাসিক ছাড়া রক্তস্রাব ইত্যাদি এ ধরনের কোনো উপসর্গের সাথে জ্বর থাকলে কিংবা পেটব্যথা পেটের যে কোনো সমস্যা বা অতিরিক্ত গ্যাস কোষ্ঠ্যকাঠিন্য দেখা দিলেও স্ত্রীরোগ চিকিৎসকের কাছে যাওয়া উচিত কেন না এ ধরনের সমস্যায় জরায়ু বা ডিম্বাশয়ের রোগ হতে পারে তবে সাবধান হওয়ার জন্য বা কিছু লক্ষণ দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে এর মধ্যে রয়েছে নিন্মাঙ্গের চারপাশে চাপ লাগা ঘনঘন মূত্রত্যাগ গ্যাস বদহজম কোষ্ঠ্যকাঠিন্য হালকা খাবার খেলেও মনে হয় পেট ভর্তি পেটে কোনো ধরনের অস্বাভাবিকতা পেটে অতিরিক্ত ব্যথা পেট ফুলে থাকা বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া ক্ষুধা কম ওজন কম বা বেশি হওয়া যৌন মিলনে ব্যথা লাগা অতিরিক্ত ক্লান্তি এবং মেনোপজের পরও এ ধরনের কোনো সমস্যা থাকলে দ্রুত চিকিৎসকরে শরণাপন্ন হতে হবে সাধারণত অল্প বয়সে বিয়ে অল্প বয়সে সন্তান হওয়া ঘনঘন সন্তান ধারণ আগে জরায়ুর কোনো সমস্যা বহুগামিতা পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতার অভাব ইনফেকশন তামাক গ্রহণ বা ধুমপান বংশগত ইত্যাদি কারণেও জরায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয় বা জরায়ুতে নানা রোগ হতে পারে দেশের প্রত্যেক জেলা ও সদর হাসপাতালে জরায়ু এবং ব্রেস্ট ক্যান্সারের জন্য কিছু পরীক্ষানিরীক্ষা বিনামূল্যে অথবা স্বল্পমূল্যে করা হয় সেখানে এসংক্রান্ত চিকিৎসাও রয়েছে এজন্য কোনো সমস্যা দেখা দিলে হাসপাতাল স্বাস্থ্যকেন্দ্র বা চিকিৎসকের কাছে যেতে হবে ব্রেস্ট বা স্তন ক্যান্সারকে চিকিৎসকরা সাধারণত তিনটি ভাগে ভাগ করে থাকেন প্রথম হচ্ছে জেনারেল ক্যাটাগরি যাদের কোনো রিস্ক নাই দ্বিতীয়টি হচ্ছে বিআরসিআরওয়ান জিন মিউট্রেশন আছে যে মিউট্রেশন যদি মায়ের বা প্রথম ব্লাডের কারও পজিটিভ থাকে তাহলে এটা জিনগত মানে ক্রমাগত বংশ পরম্পরায় এই জিন মেয়েরও বহমান হতে পারে সুতরাং এটাকে বলে হ্যারিডিটেরি ক্যান্সার তৃতীয়টি হচ্ছে অ্যাভারেজ গ্রুপ ক্যান্সার যাদের ফ্যামিলি বা তার জিনের মধ্যে কোনো মিউট্রেশন নাই তাদেরকে বলা হয় অ্যাভারেজ রিস্ক গ্রুপ কয়েকটি প্রাথমিক কথা যা সব ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য ব্রেস্ট ক্যান্সারের ক্ষেত্রেও তাই সেটা হলো ১ মহিলা হওয়া মাত্রই তার ব্রেস্ট ক্যান্সার হতে পারে সেটা যেকোনো বয়সেই হতে পারে তবে বয়স একটা ইম্পর্ট্যান্ট ফ্যাক্টর ২ বয়স যখন বাড়তে থাকে তখন এই ঝুঁকিটা বেড়ে যায় এই জন্য যখন বয়স বাড়তে থাকে তখন স্ক্রিনিং এর কথা বলা হয় কম বয়সে কিন্তু স্ক্রিনিং এর কথা খুব বলা হয় না এখন যেসব রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো আমরা কন্ট্রোল করতে পারি সেগুলো হলো ১ অতিরিক্ত ওজন আমরা যদি আমাদের ওজন নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তাহলে অনেকখানি রিস্ক কমে যাবে এটা শুধু ব্রেস্ট ক্যান্সার নয় আরও অনেক ক্যান্সারের ক্ষেত্রেই এটা প্রযোজ্য ২ দ্বিতীয়ত কিছু ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভিটি করা যদি ফিজিক্যাল অ্যাক্টিভটি করা যায় তাহলে ওজনও কমবে সঙ্গে রিস্ক ফ্যাক্টরগুলো কন্ট্রোলে থাকবে ৩ হেলদি ফুড হেলদি খাবার খুবই গুরুত্বপূর্ণ আমাদের যে এত ক্যান্সারের সংখ্যা বেড়ে যাচ্ছে এর মূল কারণ আমাদের খাদ্যাভ্যাস দেখা যায় শাকসবজি কম খাচ্ছি ফলমুল কম খাচ্ছি এখনকার বাচ্চারা আরও বেশি কম খায় ফলে একটা বড় রিস্ক ফ্যাক্টর তৈরি হয় আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ রিস্ক ফ্যাক্টার আছে যেটা হচ্ছে হরমোন অনেক সময় নারীরা বাচ্চা নিতে পিল খেয়ে থাকে পিল ঠিক আছে কিন্তু সেটা ৫ বছরের বেশি যেন না খাওয়া হয় তাহলে শরীরের মধ্যে একটা চেঞ্জ আসতে পারে অনেক নারীর মাসিক বন্ধ হয়ে গেছে ফলে অনেক সাইডইফেক্ট হতে পারে যেমন মাথা গরম হয়ে যায় খুব অস্থির লাগে এ সময় ডাক্তাররা কিছু হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি দেয় আরেক বিষয় হচ্ছে ব্রেস্ট ফিডিং যেসকল মায়েরা ব্রেস্ট ফিডিং করিয়েছেন তাদের রিস্ক ফ্যাক্টরটা কম থাকে এজন্যই সাধারণত চিকিৎসকরা বলে থাকেন বাচ্চাকে ব্রেস্টফিডিং করানো এবং এই পিলগুলো এতবেশি না খাওয়া বা লং টাইম না খাওয়া নিজের স্বাস্থ্যটাকে কন্ট্রোল করা বা অতিরিক্ত ওজন কন্ট্রোল করা সকল নারীকে অবশ্যই হেলদি লাইফস্টাইল পরিচালনা করতে হবে অনেক কিশোরী বা তরুণী অনিয়মিত মাসিক সাথে অবাঞ্ছিত লোম বা স্থূলতার সমস্যা নিয়ে চিকিৎসকের কাছে শরনাপন্ন হন বেশীরভাগ সময় এ ধরণের সমস্যাগুলো পলিসিস্টিক ওভারি হিসেবে চিহ্নিত হয়ে থাকে পলিসিস্টিক ওভারির বৈশিষ্ট্য সমূহ সাধারণতঃ ৩টি বৈশিষ্ট্য থাকে এ ধরণের রোগীদের কারো কারো মাঝে সবগুলো বৈশিষ্ট্য প্রকট থাকে তবে যে কোন ২টি বৈশিষ্ট্য থাকলেই পলিসিস্টিক ওভারি হিসেবে চিহ্নিত করা যায় ১) অনিয়মিত মাসিক এক মাসিক হতে অন্য মাসিকের মাঝে ব্যবধান ৩৫ দিনের বেশি কারো কারো ঔষধ ছাড়া মাসিক হয় না এদের অনিয়মিত ওভুলেশন হয় কিংবা ওভুলেশন হয়ই না ২) আলট্রাসনোগ্রাফিতে পলিসিস্টিক ওভারি পাওয়া যায় এ ধরণের ওভারিগুলো আকৃতিতে বড় আর ছোট ছোট ডিম্বাণু বা সিস্ট থাকে যা সংখ্যায় ১০ এর অধিক আর আকৃতিতে ১০ মিলিমিটারের কম ৩) শরীরে পুরুষ হরমোনের আধিক্য যা দেখেই বোঝা যেতে পারে বা ল্যাবে পরীক্ষা করে প্রমাণিত হতে পারে করণীয় কী পলিসিস্টিক ওভারির চিকিৎসার কয়েকটি ধাপ আছে যা বয়স ও সমস্যা অনুপাতে চিকিৎসা করতে হয় ১) সব বয়সীদের জন্য খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন ফাস্ট ফুড জাংক ফুড ও কার্বহাইড্রেট কম খাওয়া ২) নিয়মিত শরীর চর্চা আদর্শ ওজন বজায় রাখা ৩) থাইরয়েড ও প্রোলাকটিন হরমোন অনিয়ন্ত্রিত থাকলে তার চিকিৎসা করা ৪) অনিয়মিত মাসিক থাকলে তা নিয়মিতকরার ঔষধ সেবন এমনকি কখনো কখনো জম্ম বিরতিকরণ পিলও দেয়া হয় অবিবাহিত কিশোরী বা তরুণীকে ৫) মেটফরমিন বা মায়ো ইনোসিটোল জাতীয় ঔষধের কিছু ভূমিকা আছে ৬) অবাঞ্ছিত লোমের জন্য মুখে ঔষধ বা ক্রীম এমনকি লেজার চিকিৎসা ও সহায়ক হতে পারে ৭) বিবাহিত যেসব নারী গর্ভধারণ করতে চান তাদের ডিম্বাণু তৈরির ঔষধ সেবন করতে হতে পারে অবশ্যই তা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ও সম্ভব হলে ট্রান্স ভ্যাজাইনাল সনোগ্রাফির করে মনিটর করে নিতে হবে ৮) এদের গর্ভাবস্থায় বা পরবর্তী জীবনে ডায়াবেটিস উচ্চরক্তচাপ হৃদরোগের সমস্যা স্ট্রোক উচ্চ কোলেস্টেরল এইসব সমস্যা হতে পারে তাই আগে থেকেই যথাযথ ব্যবস্থা নিতে হবে ৯) দীর্ঘসময় মাসিক বন্ধ থাকলে জরায়ুর এন্ডোমেট্রয়ামে ক্যান্সার হতে পারে তাই সতর্ক থাকতে হবে ১০) এদের মেনোপজ দেরিতে হতে পারে পলিসিস্টিক ওভারি একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ তাই সবসময় চিকিৎসকের ফলোআপে থাকাটা জরুরি তবে ওজন নিয়ন্ত্রণ খাদ্যাভ্যাসের পরিবর্তন নিয়মিত ব্যায়াম অনেকসময় এ সমস্যাকে প্রতিহত করতে পারে তাই সুস্থ জীবন যাপন খুব জরুরি আর পলিসিস্টিক ওভারির রোগীদের দীর্ঘ সময় মাসিক বন্ধ থাকলে ঔষধ সেবন করতে হবে পরবর্তী জটিলতা এড়ানোর জন্য এটা এক পরিবারে কয়েকজনের হতে পারে তাই রোগের পারিবারিক ইতিহাস জানাটা ও সে অনুযায়ী ব্যবস্থা নিতে পারলে ভালো ঋতুস্রাব সব প্রাপ্তবয়স্ক নারীর একটি স্বাভাবিক শরীরবৃত্তীয় প্রক্রিয়া এ সময় অনেক রক্তক্ষয় হওয়ায় নারীর শরীরে আয়রনের অভাব তৈরি হতে পারে ঋতুস্রাবের সময়ে মেয়েদের খাওয়াদাওয়ার দিকে বিশেষ নজর দেওয়া প্রয়োজন খাদ্যতালিকায় এমন খাবার রাখতে হবে যাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন রয়েছে আসুন জেনে নিই এসব খাবার সম্পর্কে— পালং শাক পালং শাকে কম ক্যালরি হলেও এতে আয়রন থাকে প্রচুর এ ছাড়া এতে ভিটামিন সি পাওয়া যায় অনেক পালং শাক শরীরের যে কোনো রকমের প্রদাহ কমাতে সাহায্য করে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় ছোলা ছোলায় প্রচুর পরিমাণে আয়রন থাকে এটি শক্তির উৎস ছোলা ভিজিয়ে কাঁচা খেতে পারেন আর রান্না করে পেঁয়াজশসা দিয়ে মেখেও খাওয়া যায় দইচিড়া ভিটামিন বি১ আয়রন ফাইবার ছাড়াও আরও অনেক খনিজ রয়েছে চিড়ায় ঋতুস্রাবের সময়ে যাদের পেটে যন্ত্রণা বেশি হয় তারা দইচিড়া খেতে পারেন এটি প্রশান্তি এনে দেবে গুড় চিনির চেয়ে গুড় অনেক বেশি স্বাস্থ্যকর গুড়ে বেশ আয়রনও পাওয়া যায় যা আমাদের শরীরে প্রতিরোধশক্তি বাড়াতে সাহায্য করে রান্নায় দেওয়া ছাড়াও চাকফিশরবতলাচ্চিতেও চিনির বদলে গুড়ের ব্যবহার করতে পারেন সাদাস্রাব একটি শারীরিক বিষয় প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া খুব বেশি পরিমাণে না হলে এটি কোনো রোগ নয় সাধারণত জরায়ু ভেজা থাকলে সুস্থ থাকে সৃষ্টিকর্তা মেয়েদের এভাবেই সৃষ্টি করেছেন এ ব্যাপারে বিস্তারিত জানিয়েছেন ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের স্ত্রী রোগ ও প্রসূতিবিদ্যা বিশেষজ্ঞ ডা দীনা লায়লা হোসেন ১২ থেকে ৪৫ বছর পর্যন্ত একটা মেয়ের মাসিক চলতে থাকে এ সময় মাসিকের আগে ও পরে কিংবা দুই মাসিকের মাঝে যে ডিস্টার হয় সেটিই লিউকোরিয়া এটি নিয়ে চিন্তার কিছু নেই তবে এটির কারণে স্বাভাবিক কাজকর্মে ব্যাঘাত হচ্ছে মনে হলে চিকিৎসা করাতে হবে এক্ষেত্রে আমরা রং ও ধরন কেমন তরল কি না তা জেনে পরীক্ষা করাই এরপরই চিকিৎসা দেই তবে লিউকোরিয়া থেকে সুরক্ষার জন্য ব্যক্তিগত পরিষ্কারপরিচ্ছন্নতা মেনে চলতে হবে নিউরোসিল খাবার খেতে হবে নিউট্রেশন কার্বোহাইড্রেট জাতীয় খাবার খেতে হবে পাশাপাশি প্রোটিন জাতীয় খাবারের পরিমাণ ঠিক রাখতে হবে প্রতি বেলায় এক পিস মাছমাংস অথবা ডিম খাবার তালিকায় রাখতে হবে এক কাপ দুধ খেতে হবে প্রতিদিনের চাহিদা অনুযায়ী প্রোটিনের পূরণ করতে হবে ফ্যাটের পরিমাণ তো থাকতে হবেই তবে অতিরিক্ত চর্বি জাতীয় খাবার খাওয়া যাবে না শাকসবজি খেতে হবে ওভার প্রোটিন শাকসবজি না খাওয়ায় ভালো পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে একই সাথে মনে রাখতে হবে রান্নার সময় যে লবণ দেই তাই যথেষ্ট পাতে আলাদা লবণের প্রয়োজন নেই কেউ অতিরিক্ত মোটা হয়ে থাকলে নিয়মিত ব্যায়াম করতে হবে আন্ডারওয়েট হলেও লিউকোরিয়ার অসুবিধা হতে পারে আমাদের মধ্যে একটি ভুল ধারণা রয়েছে সাদাস্রাবের কারণে শরীর শুকিয়ে যায় প্রোটিন মিনারেল সবকিছু বের হয়ে যায়— এ রকম কিছুই হয় না বাড়তি ওজনের পাশাপাশি কম ওজনের নারীদেরও সমস্যাটি হতে পারে সাদাস্রাবের রং সবুজায়ন না হয় দুর্গন্ধযুক্ত হয় খুব বেশি দইয়ের মতো সাদা হয়ে যায় সেক্ষেত্রে চিকিৎসা নিতে হবে বিবাহিতদের ক্ষেত্রে দুজনকেই চিকিৎসা নিতে হবে কারণ উভয়ের কারণে এটি হয়ে থাকতে পারে অনেক সময় দেখা যায় স্ত্রী চিকিৎসা নিয়ে ভালো ছিলেন কিন্তু স্বামী চিকিৎসা না নেয়ায় তার কারণে স্ত্রী আবারো সমস্যার মুখোমুখি হলেন অ্যাসোসিয়েটেড রক্তশূন্যতা ডায়াবেটিসের মতো সমস্যাগুলোর বিষয়ে খেয়াল রাখতে হবে বড় কথা সাদাস্রাব হওয়ার পরিবেশ রেখে দিলে এটি বারবারই ফিরে আসবে প্রসবের আগে ও পরে নারীদের শরীরে অনেক পরিবর্তন আসে এর প্রভাবে অনেক কিছু বদলে যেতে শুরু করে তারই একটি হলো পিরিয়ড বা মাসিক সার্কেল মাসিকের সময় অনেক মায়ের লাল রঙের ভেজাইনাল স্রাব হয় যাকে অনেকে মাসিক মনে করে ভুল করেন আসলে এটা রক্ত আর মিউকাস গর্ভাবস্থায় পুরো সময়টাই নারীদের মাসিক বন্ধ থাকে প্রসবের পরও তা শুরু হতে কিছুটা সময় লাগে এই সময় লাগাটা যে সবার ক্ষেত্রে একই হবে তা নয় কিছু কিছু বিষয়ের ওপর নির্ভর করে প্রসবরে পর মাসিক শুরু হওয়াটা একেক জনের একেক রকম হতে পারে সাধারণত ডেলিভারির কত দিনের মধ্যে মাসিক হবে এটা নির্ভর করে মায়ের উপরেই মা কীভাবে বাচ্চাটাকে ব্রেস্টফিডিং করাচ্ছে তার ওপর নির্ভর করবে যদি মা বাচ্চাকে এক্সক্লুসিভ ব্রেস্টফিটিং করায় রাতে দুই বা তার বেশি বার খাওয়ায় তাহলে ছয় থেকে আট মাস পর্যন্ত মাসিক নাও হতে পারে তবে এই সময়ে পাশাপাশি কন্ট্রাসেপশন নিতে হবে অনেক ক্ষেত্রেই সময়সীমা আরও বাড়তে পারে অনেকের ক্ষেত্রে দুই তিন মাস পরে হতে পারে মাসিক সুতরাং এটা নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তার বিষয় নয় তবে কন্ট্রাসেপশনটা ভালোভাবে নিতে হবে বলে রাখি এই সময়টা কারও কারও ক্ষেত্রে ১৮ মাস থেকে ২ বছরও হয়ে থাকে এক্ষেত্রে আমরা বলে থাকি বাচ্চার বয়স ছয় মাস পার হলে পিল খাবেন এটা শুরু করলে দেখবেন আপনার নিয়মিত মাসিক শুরু হয়েছে নারীদের প্রজননক্ষম বয়সে জরায়ুতে সবচেয়ে বেশি যে টিউমার হতে দেখা যায় তা হলো ফাইব্রয়েড বা মায়োমা জরায়ুর পেশীর অতিরিক্ত ও অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে এ টিউমারের সৃষ্টি হয় ৩০ বছরের ঊর্ধ্বে নারীদের মধ্যে ২০ শতাংশই এই সমস্যায় আক্রান্ত ফাইব্রয়েড এক ধরনের নিরীহ টিউমার এটি ক্যানসার বা বিপজ্জনক কিছু নয় তবে দুটো সমস্যার কারণে সুচিকিৎসা দরকার এক এর ফলে অতিরিক্ত মাসিক ও ব্যথা হওয়া এবং তার জন্য রক্তশূন্যতা হতে পারে দুই এটিকে বন্ধ্যাত্বের একটি অন্যতম কারণ হিসেবে বিবেচনা করা হয় এ টিউমার কোনো ধরনের লক্ষণ প্রকাশ ছাড়াও থাকতে পারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অন্য কোনো সমস্যা নিয়ে আল্ট্রাসাউন্ড করতে গেলে এটি ধরা পড়ে টিউমারটির কারণে তলপেটে ব্যথা হয় এটি আকৃতিতে অনেক বড় হলে অবশ্যই চিকিৎসা প্রয়োজন সাধারণত ওষুধে চিকিৎসার সুযোগ কম নরমাল ডেলিভারির পর জরায়ু আগের অবস্থানে আসে কি না— একজন জানতে চেয়েছেন প্রেগনেন্সিতে নারীদের শরীরে বিভিন্ন ধরনের পরিবর্তন হয় শরীরের সব অঙ্গপ্রতঙ্গে প্রভাব পড়ে সন্তান প্রসবের পর ধীরে ধীরে জরায়ু জায়গায় ফিরে আসে কারণ শিশু হওয়ার জন্য জরায়ুমুখ খুলতে হয় তারপর একটি সময়ে সন্তান প্রসব হবে এরপর ধীরে ধীরে এটি বন্ধ হয়ে যাবে একটি সুস্থ সন্তান পৃথিবীতে আসবে এটি কোন মায়ের না চাওয়া কিন্তু অনেক সময় অন্তসত্ত্বাদের অনাকাঙ্ক্ষিত গর্ভপাতের ঘটনাও ঘটে অনেকের আবার বারবার এই সমস্যা দেখা দেয় এমনটি হলে মায়েরা ভেঙে পড়েন আবার অনেকে নতুন করে আশায় বুকও বাধেন গর্ভপাতের কারণ ও করণীয় নিয়ে যুগান্তরকে পরামর্শ দিয়েছেন বিআরবি হাসপাতালের গাইনি ও প্রসূতি বিভাগের কনসালটেন্ট ডা শাহিনা বেগম শান্তা অনেক দম্পতিই আমাদের কাছে আসেন পুনঃপুনঃ গর্ভপাতের সমস্যা নিয়ে আর আশায় বুক বাঁধেন নিশ্চয়ই একদিন সুস্থ একটি সন্তানের মুখ দেখতে পাবেন কিছু কারণ যা অ্যাবরশন বা গর্ভপাতের কারণ হতে পারে প্রায় ৫০ শতাংশ ক্ষেত্রেই গর্ভপাতের কোনো কারণ খুঁজে পাওয়া যায় না সব পরীক্ষানিরীক্ষার পর যখন কোনো কারণ আমরা খুঁজে পাই না তখনই অজ্ঞাতনামা হিসাবে বলে থাকি এদের যে কোনো সময় একটি সুস্থ বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা থাকে হরমোনজনিত সমস্যা অনিয়ন্ত্রিত ডায়াবেটিস অনিয়ন্ত্রিত থাইরয়েড হরমোন প্রোলাকটিন হরমোন যদি বেশি থাকে ও প্রজেস্টেরন হরমোনের ঘাটতি থাকলে অ্যাবরশন হতে পারে সেক্ষেত্রে হরমোনের ডাক্তার দেখিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে ও গর্ভাবস্থায় প্রজেস্টেরন হরমোন নিতে হবে ক্রোমোজমের ত্রুটি বাবামায়ের ক্রোমোজমের যদি কোনো ত্রুটি থাকে তা গর্ভস্থ সন্তানের মাঝেও থাকতে পারে সেক্ষেত্রে বারবার অ্যাবরশন হতে পারে বাবামায়ের ক্রোমোজমের পরীক্ষা করলে তা ধরা পড়ে আবার কখনও কখনও গর্ভস্থ সন্তানও ক্রোমোজমের ত্রুটি নিয়ে জন্মায় বাবামা একদম সুস্থ মায়ের বয়স ৩৫ বা তার বেশি হলে এমন হওয়ার আশঙ্কা বেশি থাকে এটা নিশ্চিত হওয়ার জন্য অ্যাবরশন হওয়ার পরে সেখান থেকে টিস্যু নিয়ে পরীক্ষা করলে নিশ্চিত হওয়া যাবে উভয়ক্ষেত্রেই আইভিএফ বা টেস্ট টিউব বেবি চিকিৎসার সহায়তা নিতে হবে ভ্রূণ হতে কোষ নিয়ে ক্রোমোজম পরীক্ষা করে নিশ্চিত হয়ে সুস্থ ভ্রূণ প্রতিস্থাপন করা যেতে পারে অ্যান্টিফসফোলিপিড সিনড্রোম ও থ্রম্বোফিলিয়া এ ক্ষেত্রে রক্তের ঘনত্ব বেশি থাকে গর্ভাবস্থায় রক্ত জমাট বেঁধে যায় ছোট ছোট রক্তনালিতে রক্ত সরবরাহ বাধাপ্রাপ্ত হয় ফলে ভ্রূণও প্রয়োজনীয় রক্ত সরবরাহ পায় না ও একসময় হার্টবিট বন্ধ হয়ে যায় বারবার মিসড অ্যাবরশন হলে এ রকম কারণ চিন্তা করতে হবে এ সমস্যা হতে গর্ভাবস্থায় উচ্চরক্তচাপও হতে পারে এ সমস্যা নির্ণীত হলে অ্যাসপিরিন ও লো মলিকুলার ওয়েট হেপারিন নিতে হবে জরায়ুর আকৃতিগত ত্রুটি জরায়ুতে কোনো টিউমার জরায়ুর ভেতর পর্দা জন্মগতভাবে জরায়ুর আকৃতিগত কোনো সমস্যা জরায়ুমুখের দুর্বলতা ইত্যাদি কারণেও বারবার গর্ভপাত হতে পারে এসব কারণের জন্য গর্ভপাত হলে সাধারণত ৩ মাস পার হয়ে যাওয়ার পর হয় কিংবা সময়ের অনেক আগেই প্রসববেদনা শুরু হয়ে যায় এ ক্ষেত্রে টিউমার বা পর্দা অপারেশন করে কেটে ফেলতে হবে জরায়ুমুখ দুর্বলতার জন্য সারভাইকেল সারক্লেজ (Cervical Cerclage) অপারেশন করতে হবে আকৃতিগত ত্রুটিও কখনো কখনো অপারেশন করে ঠিক করে দেওয়া যায় জীবনযাপনের ত্রুটি ধূমপান মদ্যপান স্থূলতা ঝুঁকিপূর্ণ পেশা পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি কারণেও গর্ভপাত হতে পারে স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করতে হবে ওজন কমাতে হবে ও প্রয়োজনে পেশার পরিবর্তন করতে হবে ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর গুণগতমানের সমস্যা ডিম্বাণু ও শুক্রাণুর গুণগতমানের সমস্যা থাকলেও গর্ভপাত হবে কিছু অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ও ভিটামিন দেওয়া যেতে পারে চিকিৎসাতে যদি উন্নতি না হয় আইভিএফ বা টেস্ট টিউব বেবি চিকিৎসার সহায়তা লাগতে পারে যেসব দম্পতিরা বারবার গর্ভপাতের সমস্যায় ভুগে থাকেন তারা মানসিকভাবে খুব দুর্বল ও হতাশ হয়ে থাকেন নানা রকম উদ্বিগ্নতা তাদের ঘিরে যথাযথ কাউন্সেলিং মানসিক সাপোর্ট ও চিকিৎসা তাদের মুক্তি দিতে পারে হতাশা থেকে আর শোনাতে পারে আশার কথা পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম মূলত নারীদেহে এন্ড্রোজেন (পুরুষ যৌন হরমোন)এর আধিক্যের কারণে সংঘটিত শারীরিক সমস্যা এক্ষেত্রে নারীদেহে এন্ড্রোজেন হরমোনের প্রভাবে বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখা দিতে থাকে বন্ধত্য অনিয়মিত মাসিক জরায়ু ক্যানসারের ঝুঁকি বেড়ে যায় এ ধরণের সমস্যায় পলিসিস্টিক ওভারি প্রধানত কিশোরী ও নারীদের প্রজননক্ষম সময়ে হয়ে থাকে (১৫৪৪ বছর) সংখ্যার কিছুটা তারতম্য হলেও ১৫ বছর থেকে বয়স ৪৪ বছরের দিকে যত আগাতে থাকে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের রোগীর সংখ্যা তত বৃদ্ধি পেতে থাকে (২২২৬৭) উপসর্গ ক) অনিয়মিত মাসিক খ) অতিরিক্ত রক্তস্রাব গ) মুখে ও শরীরে অত্যধিক লোম (পুরুষালি) ঘ) ব্রণ মুখে ও শরীরের অন্যান্য অংশে আরও কিছু শারীরিক সমস্যা এর সঙ্গে থাকতে পারে তলপেটে ব্যথা মকমলেরমতো কালো ত্বক (ঘাড় বগল ইত্যাদি জায়গায়) বন্ধ্যত্ব এ রোগীদের টাইপ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় এদের অনেকেই দৈহিক স্থূলতায় আক্রান্ত হয় নাকডাকা ও ঘুমের সময় হঠাৎ করে শ্বাস বন্ধ হওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীনতা ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম একটি জীনগত ত্রুটি ও পরিবেশগত ত্রুটির সমন্বিত ফল জীনগত ত্রুটি আছে এমন কিশোরীর দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাওয়া খুব কম শারীরিক শ্রম সম্পাদন করা ও ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ করা ইত্যাদি এ রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম দেখা দেয় যখন ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি করতে উদ্দীপ্ত হয় যার পিছনে পিটুইটারি গ্রন্থি কর্তৃক অতিরিক্ত এলএইচ (LH) নিঃস্বরণ ও দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্সের উপস্থিতি পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম নাম হওয়ার প্রধান কারণটি হলো এ রোগিনীদের ডিম্বাশয়ে বিভিন্ন বয়সি বিভিন্ন আকারের বিভিন্ন সংখ্যার সিস্ট থাকতে পারে কিন্তু এটি পরিষ্কারভাবে একটি হরমোনজনিত সমস্যা অধিকাংশ রোগীর দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্স থাকে এবং তারা স্থূলকায় হয় লক্ষণ ১ অনিয়মিত মাসিক বেশিরভাগ মেয়েদের ৪০ বা ৪৫ বা ৫০ দিন বা কারও কারও ক্ষেত্রে আরও বেশি দিন পর ঋতুস্রাব হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে অল্প মাত্রায় ঋতুস্রাব হতে পারে কারও কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হয় মাসের পর মাস ঋতুস্রাব বন্ধ থাকাও অস্বাভাবিক নয় বয়ঃসন্ধিকালের শুরুতেই এ সমস্যা শুরু হতে পারে প্রজননক্ষম সময়ে অন্য যে কোনো সময়েও এ সমস্যা শুরু হতে পারে ২ বন্ধ্যত্ব যতজন নারী সন্তান নিতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের একটা বড় অংশই পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের কারণে হয় আর এ বন্ধ্যত্বের কারণ হলো ঋতুচক্রের অনেকগুলোতেই ডিম্বানুর অনুপস্থিতি ৩ পুরুষালি হরমোনের অধিক মাত্রায় উপস্থিতিও এর বহিঃপ্রকাশ এর ফল স্বরূপ নারী দেহে পুরুষদের মতো লোম দেখা দিতে পারে (হার্সোটিজম) মুখে বা শরীরের অন্যান্য জায়গায় ব্রণ হওয়া পুরুষালিটাক ইত্যাদি প্রতি চারজন পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের নারীর তিনজনের দেহে এ লক্ষণগুলো থাকে ৪ মেটাবলিক সিন্ড্রোম এতে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত নারীর দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্সের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে ক্রমশ দৈহিক ওজন বৃদ্ধি হওয়া ক্ষুধা বৃদ্ধি পাওয়া দুর্বলতা স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা ঘাড়ের পিছনে বা বগলে নরম কালো ত্বকের উপস্থিতি রক্তের গ্লুকোজ কিছুটা বেড়ে যাওয়া কলেস্টেরল অস্বাভাবিক থাকা ইত্যাদি রোগ শনাক্তকরণ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম শনাক্ত করতে সচরাচর নিুলিখিত ক্রাইটেরিয়ার যে কোনো দুটির উপস্থিতি আবশ্যক নারীদেহে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন হরমোন উপস্থিতির প্রমাণ অনিয়মিত ঋতুস্রাব ডিম্বাশয়েসিস্ট পরীক্ষানিরীক্ষা সিরাম টেস্টোস্টেরন এলিস এফএসএইচ পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম ওজিটিটি চিকিৎসা জীবনযাত্রা ব্যবস্থাপনা চিকিৎসার শুরুতেই খাদ্য ব্যবস্থাপনার দিকে গুরুত্বপূর্ণভাবে নজর দিতে হবে খাদ্য ব্যবস্থাপনা রোগিনীর দৈহিক ওজন কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে বিপাকীয় প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটাবে যাতে করে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্স কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে আদর্শ জীবনযাপন ব্যবস্থাপনা রোগিনীর হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাবে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের খাদ্য তালিকায় শর্করার আধিক্য কম থাকবে শকসবজি (আলু বাদে) রঙিন ফলমূল ও আমিষজাতীয় খাদ্য প্রাধান্য পাবে দৈহিক ওজন বিবেচনায় রেখে শারীরিক শ্রমের ব্যবস্থা করতে হবে ওষুধ নারীদের জন্ম নিয়ন্ত্রের জন্য ব্যবহৃত পিলগুলো যাতে স্বল্প মাত্রায় ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্ট্রেরন থাকে তা খুব সহায়ক ওষুধ মেটফরমিন অবাঞ্ছিত লোম দূর করবার ক্রিম প্রজনন সম্ভাবনা বৃদ্ধির ওষুধ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত নারীদের অধিকাংশই এ সমস্যার শারীরিক লক্ষণগুলোকে খুব দ্রুত বুঝতে পারেন না কেউ কেউ লক্ষণগুলো বুঝতে পারলেও সংকোচ বোধের কারণে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে দেরি করেন যেহেতু রোগটির ব্যাপকতা ও সুদূরপ্রসারী স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে তাই প্রজননক্ষম বয়সের সব নারীকে তার এ সমস্যা আছে কিনা জানার জন্য হরমোন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি কিশোরীদের হরমোনজনিত নানা সমস্যা হয়ে থাকে এর মধ্যে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম একটি বহুল পরিচিত স্বাস্থ্য সমস্যা যেটি কিশোরী থেকে মধ্যবয়সী নারীদের হয়ে থাকে এ ধরণের সমস্যার লক্ষণ দেখা দিয়ে অনেকে লজ্জায় চেপে যান এতে বড় ধরণের স্বাস্থ্য ঝুঁকি দেখা দিতে পারে পলিসিস্টিক ওভারি প্রধানত বালিকা ও নারীদের প্রজননক্ষম সময়ে হয়ে থাকে (১৫৪৪ বছর) সংখ্যার কিছুটা তারতম্য হলেও ১৫ বছর থেকে বয়স ৪৪ বছরের দিকে যত আগাতে থাকে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের রোগীর সংখ্যা তত বৃদ্ধি পেতে থাকে (২২২৬৭) পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশেই পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের রোগীর সংখ্যা আলাদা আলাদা রকম এবং এ সংখ্যা রোগ শনাক্তকরণের ক্রাইটেরিয়ার কারণেও আলাদা হতে পারে ইউরোপের দেশগুলোর প্রজননক্ষম মহিলাদের ১৫২০ শতাংশ এ সমস্যায় আক্রান্ত আমেরিকার দেশগুলোতে এর সংখ্যা ২০ শতাংশের কাছাকাছি এশিয়ার দেশগুলোতে এ সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হয় তবে বাংলাদেশে এ হার ২৫ শতাংশের কাছাকাছি হবে বলে ধরে নেওয়া হয় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম মূলত নারীদেহে এন্ড্রোজেন (পুরুষ যৌন হরমোন)এর আধিক্যের কারণে সংঘটিত শারীরিক সমস্যা এক্ষেত্রে নারীদেহে এন্ড্রোজেন হরমোনের প্রভাবে বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখা দিতে থাকে যেমন ক) অনিয়মিত মাসিক খ) অতিরিক্ত রক্তস্রাব গ) মুখে ও শরীরে অত্যধিক লোম (পুরুষালি) ঘ) ব্রণ মুখে ও শরীরের অন্যান্য অংশে আরও কিছু শারীরিক সমস্যা এর সঙ্গে থাকতে পারে তলপেটে ব্যথা মকমলেরমতো কালো ত্বক (ঘাড় বগল ইত্যাদি জায়গায়) বন্ধ্যত্ব এ রোগীদের টাইপ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় এদের অনেকেই দৈহিক স্থূলতায় আক্রান্ত হয় নাকডাকা ও ঘুমের সময় হঠাৎ করে শ্বাস বন্ধ হওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীনতা ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম একটি জীনগত ত্রুটি ও পরিবেশগত ত্রুটির সমন্বিত ফল জীনগত ত্রুটি আছে এমন কিশোরীর দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাওয়া খুব কম শারীরিক শ্রম সম্পাদন করা ও ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ করা ইত্যাদি এ রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম দেখা দেয় যখন ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি করতে উদ্দীপ্ত হয় যার পিছনে পিটুইটারি গ্রন্থি কর্তৃক অতিরিক্ত এলএইচ (LH) নিঃস্বরণ ও দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্সের উপস্থিতি পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম নাম হওয়ার প্রধান কারণটি হলো এ রোগিনীদের ডিম্বাশয়ে বিভিন্ন বয়সি বিভিন্ন আকারের বিভিন্ন সংখ্যার সিস্ট থাকতে পারে কিন্তু এটি পরিষ্কারভাবে একটি হরমোনজনিত সমস্যা অধিকাংশ রোগীর দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্স থাকে এবং তারা স্থূলকায় হয় লক্ষণ ১ অনিয়মিত মাসিক বেশিরভাগ মেয়েদের ৪০ বা ৪৫ বা ৫০ দিন বা কারও কারও ক্ষেত্রে আরও বেশি দিন পর ঋতুস্রাব হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে অল্প মাত্রায় ঋতুস্রাব হতে পারে কারও কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হয় মাসের পর মাস ঋতুস্রাব বন্ধ থাকাও অস্বাভাবিক নয় বয়ঃসন্ধিকালের শুরুতেই এ সমস্যা শুরু হতে পারে প্রজননক্ষম সময়ে অন্য যে কোনো সময়েও এ সমস্যা শুরু হতে পারে ২ বন্ধ্যত্ব যতজন নারী সন্তান নিতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের একটা বড় অংশই পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের কারণে হয় আর এ বন্ধ্যত্বের কারণ হলো ঋতুচক্রের অনেকগুলোতেই ডিম্বানুর অনুপস্থিতি ৩ পুরুষালি হরমোনের অধিক মাত্রায় উপস্থিতিও এর বহিঃপ্রকাশ এর ফল স্বরূপ নারী দেহে পুরুষদের মতো লোম দেখা দিতে পারে (হার্সোটিজম) মুখে বা শরীরের অন্যান্য জায়গায় ব্রণ হওয়া পুরুষালিটাক ইত্যাদি প্রতি চারজন পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের নারীর তিনজনের দেহে এ লক্ষণগুলো থাকে ৪ মেটাবলিক সিন্ড্রোম এতে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত নারীর দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্সের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে ক্রমশ দৈহিক ওজন বৃদ্ধি হওয়া ক্ষুধা বৃদ্ধি পাওয়া দুর্বলতা স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা ঘাড়ের পিছনে বা বগলে নরম কালো ত্বকের উপস্থিতি রক্তের গ্লুকোজ কিছুটা বেড়ে যাওয়া কলেস্টেরল অস্বাভাবিক থাকা ইত্যাদি রোগ শনাক্তকরণ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম শনাক্ত করতে সচরাচর নিুলিখিত ক্রাইটেরিয়ার যে কোনো দুটির উপস্থিতি আবশ্যক নারীদেহে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন হরমোন উপস্থিতির প্রমাণ অনিয়মিত ঋতুস্রাব ডিম্বাশয়েসিস্ট পরীক্ষানিরীক্ষা সিরাম টেস্টোস্টেরন এলিস এফএসএইচ পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম ওজিটিটি চিকিৎসা জীবনযাত্রা ব্যবস্থাপনা চিকিৎসার শুরুতেই খাদ্য ব্যবস্থাপনার দিকে গুরুত্বপূর্ণভাবে নজর দিতে হবে খাদ্য ব্যবস্থাপনা রোগিনীর দৈহিক ওজন কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে বিপাকীয় প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটাবে যাতে করে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্স কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে আদর্শ জীবনযাপন ব্যবস্থাপনা রোগিনীর হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাবে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের খাদ্য তালিকায় শর্করার আধিক্য কম থাকবে শকসবজি (আলু বাদে) রঙিন ফলমূল ও আমিষজাতীয় খাদ্য প্রাধান্য পাবে দৈহিক ওজন বিবেচনায় রেখে শারীরিক শ্রমের ব্যবস্থা করতে হবে ওষুধ নারীদের জন্ম নিয়ন্ত্রের জন্য ব্যবহৃত পিলগুলো যাতে স্বল্প মাত্রায় ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্ট্রেরন থাকে তা খুব সহায়ক ওষুধ মেটফরমিন অবাঞ্ছিত লোম দূর করবার ক্রিম প্রজনন সম্ভাবনা বৃদ্ধির ওষুধ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত নারীদের অধিকাংশই এ সমস্যার শারীরিক লক্ষণগুলোকে খুব দ্রুত বুঝতে পারেন না কেউ কেউ লক্ষণগুলো বুঝতে পারলেও সংকোচ বোধের কারণে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে দেরি করেন যেহেতু রোগটির ব্যাপকতা ও সুদূরপ্রসারী স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে তাই প্রজননক্ষম বয়সের সব নারীকে তার এ সমস্যা আছে কিনা জানার জন্য হরমোন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি স্তন ক্যানসার বর্তমান সময়ের বহুল পরিচিত একটি রোগ বিশ্বে হাজার হাজার মানুষ এই রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন বাংলাদেশে প্রতি বছর বহু নারী মারা যান এই স্তন ক্যানসারে স্তন ক্যানসারে শুধু যে নারীরাই আক্রান্ত হন তেমন নয় বর্তমানে এই রোগে পুরুষরাও আক্রান্ত হচ্ছেন আগে থেকে সচেতন থাকলে ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে চললে স্তন ক্যানসার থেকে বাঁচা যায় আক্রান্ত হওয়ার পরও ঠিকমতো চিকিৎসা নিলে এ রোগ থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায় কাদের স্তন ক্যানসার হয় যারা নিয়মিত স্ক্রিনিং করান না বয়স ৪০ বছরের বেশি হলে কোনো উপসর্গ ছাড়াই চিকিৎসকের পরামর্শে ছয় থেকে ১২ মাস অন্তর সব নারীকে ম্যামোগ্রাম করাতে হবে রুটিন পরীক্ষা তো করাতেই হবে ১২ বছরের আগে যদি ঋতুস্রাব শুরু হয় কারও ঋতুস্রাব যদি ৫৫ বছরের পরও চলতে থাকে প্রথম সন্তান যদি ৩৫ বছরের পর হয় স্তনে অন্য কোনো রোগ হয় যাদের সন্তান হয় না অর্থাৎ বন্ধ্যা যাদের উচ্চতা ৫'৮ বা তারও বেশি পারিবারিক ইতিহাস অর্থাৎ মা খালা বোন এবং রক্তের সম্পর্কযুক্ত পরিবারের একজনের ক্যানসার হলে অন্যদের মধ্যে ক্যানসার হওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ্য করা যায় কেন স্তন ক্যানসার হয় অনেক সময় টানা জন্মবিরতিকরণ পিল সেবন থেকেও স্তন ক্যানসার হয় ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর যারা হরমোন থেরাপি নিয়ে থাকেন তাদের এ সমস্যা হতে পারে বন্ধ্যত্বের কারণেও স্তন ক্যানসার হতে পারে বাঁচার উপায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন কায়িক ও শারীরিক পরিশ্রম করুন প্রতিদিন ঘাম ঝরিয়ে ৩০৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন প্রতিদিন চার ধরনের ফল ও সবজি খেতে হবে ধূমপান মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন জন্মবিরতিকরণ পিল সেবন থেকে বিরত থাকুন বিশেষ করে যাদের বয়স ৩৫ বছর পার হয়েছে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর অনেকেই হরমোন থেরাপি নিয়ে থাকেন সেটি থেকে বিরত থাকুন সন্তানকে বুকের দুধ খাওয়ান এমন মায়েদের অবশ্যই শিশুকে ছয় মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ পান করাবেন অন্তত দুই বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়াবেন ওষুধে রোগ সারায় আবার ওষুধেই স্তন ক্যানসার হয় যদি কেউ টেমক্সিফেন অথবা রেলক্সিফেন ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করেন কখন চিকিৎসকের কাছে যাবেন বুকের মধ্যে শক্ত চাকা ঘন পুরো বা অমসৃণ ও একই স্থানে থাকে স্তন ফুলে গেলে গরম অনুভব হলে লাল হয়ে গেলে অথবা ত্বক কালো হয়ে গেলে স্তনের আকার আকৃতি যদি দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে স্তনের ত্বকে যদি গর্ত হয় বা কুঁচকে যায় নিপল যদি বেশি চুলকায় নিপল যদি হঠাৎ করে ফুলে যায় বা অংশ বিশেষ ফুলে যায় হঠাৎ করেই নিপল দিয়ে রক্ত বা সাদা যে কোনো তরল জাতীয় আঠালো পদার্থ নিঃসরণ হতে শুরু করে হঠাৎ করেই স্তনের মধ্যে ব্যথা শুরু হয়েছে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে স্তন ক্যান্সার মরণব্যাধি হলেও সচেতন হয়ে প্রাথমিক পর্যায়ে শনাক্ত করে চিকিৎসকের কাছে আসলে নিরাময় সম্ভব এজন্য নিজে নিজে পরীক্ষার পাশাপাশি রয়েছে আল্ট্রাসনোগ্রাম বা মেমোগ্রাম পদ্ধতি তিনি বলেন শুধু সেমিনার বা সিম্পোজিয়ামের মাধ্যমে বা পত্রিকার মাধ্যমে কয়জনের দোরগোড়ায় আমরা এটাকে পৌঁছিয়ে দিতে পারি আর স্তন ক্যান্সারের ক্ষেত্রে রোগীরা অনেকসময় সচেতনতার অভাবে লজ্জা অনুভব করে চিকিৎসকের কাছে আসছেন না আরেকটা বিষয় হচ্ছে দীর্ঘ ১ বছর সময়ে যারা অন্যান্য ক্যান্সার রোগী তারা হয়তো সচেতন ছিল কিন্তু যাদের স্তনে একটা চাকা হয়েছে তারা লজ্জা কাটিয়ে উঠে ডাক্তারের কাছে আসতে চাইলেও করোনা কিন্তু একটা বিরাট দেয়াল হয়ে তাদের সামনে দাঁড়িয়েছে সেক্ষেত্রে তারা একটা সময় স্বামীকেই বলেন এবং তারাই স্ত্রীদের সচেতন করেন এবং চিকিৎসকের কাছে নিয়ে আসেন তবে কিছু কিছু ক্ষেত্রে হয়তো এর ব্যতিক্রম দেখা যেতে পারে প্রাথমিক পর্যায়ে চিকিৎসকের শরণাপণ্ন হলে এটা সম্পূর্ণ নিরাময়যোগ্য এজন্যই আমরা বলে থাকি আর্লি ডিটেকশন সেভস লাইফ ক্যান্সার মানেই যে মরণব্যাধী এ রকমটা মনে করার কিছু নেই তবে সেটা সম্পূর্ণ নিরাময় করার জন্যে অবশ্যই স্তন ক্যান্সারের প্রাথমিক পর্যায়েই চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে এবং ধাপে ধাপে এটার সম্পূর্ণ চিকিৎসাটা নিতে হবে স্তন ক্যান্সার রোগীদের কখন চিকিৎসকের কাছে আসা উচিত এ ব্যাপারে ডা কৃষ্ণা রূপা মজুমদার বলেন যেসব পরিবারে স্তন ক্যান্সার বা ওভারিয়ান ক্যান্সারের ইতিহাস আছে সেসব পরিবারের সদস্যদের ৩০ বছর বয়স থেকেই স্ক্রিনিংএর আওতায় আসতে হবে আর যাদের পারিবারিক ইতিহাস নেই তাদের স্তনে চাকা হলে নিপল দিয়ে রসজাতীয় পদার্থ বের হয় বা নিপলের ভিতরে ঢুকে গেলে চিকিৎসকের সাথে যোগাযোগ করতে হবে অনেকে আবার চাকা বুঝতে পারেন না যেমন যারা একটু বেশি স্বাস্থ্যবান যাদের ব্রেস্ট একটু হেভি বা যারা কনসিভ করেছেন অথবা ল্যাক্টিটিং মাদার (দুগ্ধবতী মা) তারা অনেক সময় চাকা বুঝতে পারেন না গর্ভবতী মায়েদের ক্ষেত্রে স্তনে অনেক পরিবর্তন আসতে পারে যে কারণে চাকা থাকলেও বুঝা যায় না তাই যারা কনসিভ করছেন বা করবেন তারা অবশ্যই স্তনে কমপক্ষে একটা আলট্রাসনোগ্রাম করিয়ে নিবেন যাতে স্তন ক্যান্সার থাকলে সেটা বুঝা যায় স্তন ক্যান্সারের যে চাকাটা সেটা কিন্তু ব্যাথা সৃষ্টি করে না তাই এটা গুপ্তঘাতকের মতো আস্তে আস্তে বড় হতে থাকে যখন অনেক বড় হয়ে যায় স্কিন ধরে ফেলে নিপল দিয়ে রস বের হয় তখন সেটা ব্যাথার সৃষ্টি করে তারমানে সেটা তখন ঝুঁকিপূর্ণ পর্যায়ে পৌঁছে গেছে সেজন্য বাচ্চা হওয়ার আগে ও পরে একটা অন্তত আল্ট্রাসনোগ্রাম করা উচিত মেমোগ্রাম করিয়ে রেডিয়েশন নেওয়ার দরকার নাই যদিও মেমোগ্রাম অনেক লো রেডিয়েশনের একটা টেস্ট তাছাড়া ৫০ বছরের পরে একবার চিকিৎসকের কাছে এসে আল্ট্রাসনোগ্রাম এবং মেমোগ্রাফিটা অবশ্যই করা উচিত আর যারা স্তন বিশেষজ্ঞ তারা সাধারণ একটা মেমোগ্রাফি দেখলে ক্যান্সার না থাকলেও যদি সেটা পরে হওয়ার সম্ভাবনা থাকে তাও বুঝতে পারেন স্তনে চাকা অনুভব করলে পরীক্ষাটা কীভাবে করা সম্ভব এ ব্যাপারে ডা কৃষ্ণা রূপা মজুমদার বলেন সেলফ ব্রেস্ট এক্সামিনেশন বা এসব প্রক্রিয়াটা যদি আমরা সব নারীর দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে পারতাম বা তাদের শিখাতে পারতাম তাহলে এই স্তন ক্যান্সারের আক্রান্তের সংখ্যাটা না কমলেও তারা আমাদের কাছে প্রাথমিক পর্যায়ে আসতে পারতো এই পরীক্ষাটা খুব সহজ এবং যেকোনো নারীই তার গোসলের সময় বা ওয়াশরুমে গেলে এটা নিজে নিজেই পরীক্ষা করতে পারে এ ধরণের চাকা হলে সেটা কোনো নারী তার ম্যামারি গ্ল্যান্ড বা স্তনকে যদি ক্লকওয়াইজ বা অ্যান্টিক্লকওয়াইজ ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে স্পর্শ করে তাহলে অবশ্যই একটা অস্বাভাবিক কিছু টের পাবেন এই পরীক্ষাটা করার সময় হাতের তালু বাকা না করে সোজাভাবে রাখতে হবে বৃদ্ধাঙ্গুল বাদে বাকি চারটা আঙুল একসাথে করে স্তনে চাপ দিয়ে দেখতে হবে অস্বাভাবিক কিছু বোঝা যায় কিনা এটা যেকোনো সময় করা যায় তবে মাসিকের ৭ দিন আগে বা ৭ দিন পরে এই পরীক্ষাটা করলে স্তনে কোনো চাকা থাকলে সেটা তখন গুরুত্বসহকারে বুঝা যায় এছাড়াও সাবান পানিতে একটু ভিজিয়ে স্তনের চারপাশে যদি সার্কেল করে তাহলেও অস্বাভবিকতা বা চাকা থাকলে সেটা বোঝা যায় এই পরীক্ষাগুলো সাধারণত আয়নার সামনে দাঁড়িয়ে করলে ভালো বোঝা যায় আর বেশীরভাগ ক্ষেত্রে রোগীরাই এসে বলেন স্তনে চাকা হয়েছে সেক্ষেত্রে তারাই ডায়াগনোসিস করে আসেন এবং সেটা বেশ গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকাই পালন করে সেকারণেই তাদেরকে এই জ্ঞানটা দেওয়া দরকার তাহলে তারা স্তন ক্যান্সারের অনেক প্রাথমিক পর্যায়ে নিজেই বুঝতে পারবেন এবং চিকিৎসকের কাছে আসবেন আর তখন আমরাও সেটাকে খুব সহজেই সম্পূর্ণ নিরাময় করতে পারবো পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম একটি হরমোনজনিত স্বাস্থ্য সমস্যা যা সবচেয়ে বেশি সংখ্যক মানুষকে আক্রান্ত করছে এটি প্রধানত বালিকা ও মহিলাদের প্রজননক্ষম সময়ে হয়ে থাকে (১৫৪৪ বছর) সংখ্যার কিছুটা তারতম্য হলেও ১৫ বছর থেকে বয়স ৪৪ বছরের দিকে যত আগাতে থাকে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের রোগীর সংখ্যা তত বৃদ্ধি পেতে থাকে (২২২৬৭) পৃথিবীর প্রত্যেকটি দেশেই পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের রোগীর সংখ্যা আলাদা আলাদা রকম এবং এ সংখ্যা রোগ শনাক্তকরণের ক্রাইটেরিয়ার কারণেও আলাদা হতে পারে ইউরোপের দেশগুলোর প্রজননক্ষম মহিলাদের ১৫২০ শতাংশ এ সমস্যায় আক্রান্ত আমেরিকার দেশগুলোতে এর সংখ্যা ২০ শতাংশের কাছাকাছি এশিয়ার দেশগুলোতে এ সংখ্যা আরও বেশি হবে বলে আশঙ্কা করা হয় তবে বাংলাদেশে এ হার ২৫ শতাংশের কাছাকাছি হবে বলে ধরে নেওয়া হয় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম মূলত নারীদেহে এন্ড্রোজেন (পুরুষ যৌন হরমোন)এর আধিক্যের কারণে সংঘটিত শারীরিক সমস্যা এক্ষেত্রে নারীদেহে এন্ড্রোজেন হরমোনের প্রভাবে বিভিন্ন রকম লক্ষণ দেখা দিতে থাকে যেমন ক) অনিয়মিত মাসিক খ) অতিরিক্ত রক্তস্রাব গ) মুখে ও শরীরে অত্যধিক লোম (পুরুষালি) ঘ) ব্রণ মুখে ও শরীরের অন্যান্য অংশে আরও কিছু শারীরিক সমস্যা এর সঙ্গে থাকতে পারে তলপেটে ব্যথা মকমলেরমতো কালো ত্বক (ঘাড় বগল ইত্যাদি জায়গায়) বন্ধ্যত্ব এ রোগীদের টাইপ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি অনেক বেড়ে যায় এদের অনেকেই দৈহিক স্থূলতায় আক্রান্ত হয় নাকডাকা ও ঘুমের সময় হঠাৎ করে শ্বাস বন্ধ হওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীনতা ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম একটি জীনগত ত্রুটি ও পরিবেশগত ত্রুটির সমন্বিত ফল জীনগত ত্রুটি আছে এমন কিশোরীর দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাওয়া খুব কম শারীরিক শ্রম সম্পাদন করা ও ঝুঁকিপূর্ণ খাদ্য গ্রহণ করা ইত্যাদি এ রোগের সম্ভাবনা বাড়িয়ে দেয় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম দেখা দেয় যখন ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি করতে উদ্দীপ্ত হয় যার পিছনে পিটুইটারি গ্রন্থি কর্তৃক অতিরিক্ত এলএইচ (LH) নিঃস্বরণ ও দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্সের উপস্থিতি পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম নাম হওয়ার প্রধান কারণটি হলো এ রোগিনীদের ডিম্বাশয়ে বিভিন্ন বয়সি বিভিন্ন আকারের বিভিন্ন সংখ্যার সিস্ট থাকতে পারে কিন্তু এটি পরিষ্কারভাবে একটি হরমোনজনিত সমস্যা অধিকাংশ রোগীর দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্স থাকে এবং তারা স্থূলকায়া হয় লক্ষণগুলো ১ অনিয়মিত মাসিক বেশিরভাগ মেয়েদের ৪০ বা ৪৫ বা ৫০ দিন বা কারও কারও ক্ষেত্রে আরও বেশি দিন পর ঋতুস্রাব হয় অধিকাংশ ক্ষেত্রে অল্প মাত্রায় ঋতুস্রাব হতে পারে কারও কারও ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ঋতুস্রাব হয় মাসের পর মাস ঋতুস্রাব বন্ধ থাকাও অস্বাভাবিক নয় বয়ঃসন্ধিকালের শুরুতেই এ সমস্যা শুরু হতে পারে প্রজননক্ষম সময়ে অন্য যে কোনো সময়েও এ সমস্যা শুরু হতে পারে ২ বন্ধ্যত্ব যতজন নারী সন্তান নিতে ব্যর্থ হচ্ছে তাদের একটা বড় অংশই পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের কারণে হয় আর এ বন্ধ্যত্বের কারণ হলো ঋতুচক্রের অনেকগুলোতেই ডিম্বানুর অনুপস্থিতি ৩ পুরুষালি হরমোনের অধিক মাত্রায় উপস্থিতিও এর বহিঃপ্রকাশ এর ফল স্বরূপ নারী দেহে পুরুষদের মতো লোম দেখা দিতে পারে (হার্সোটিজম) মুখে বা শরীরের অন্যান্য জায়গায় ব্রণ হওয়া পুরুষালিটাক ইত্যাদি প্রতি চারজন পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের নারীর তিনজনের দেহে এ লক্ষণগুলো থাকে ৪ মেটাবলিক সিন্ড্রোম এতে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত নারীর দেহে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্সের লক্ষণগুলো প্রকাশ পেতে থাকে ক্রমশ দৈহিক ওজন বৃদ্ধি হওয়া ক্ষুধা বৃদ্ধি পাওয়া দুর্বলতা স্মৃতিশক্তি দুর্বলতা ঘাড়ের পিছনে বা বগলে নরম কালো ত্বকের উপস্থিতি রক্তের গ্লুকোজ কিছুটা বেড়ে যাওয়া কলেস্টেরল অস্বাভাবিক থাকা ইত্যাদি রোগ শনাক্তকরণ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম শনাক্ত করতে সচরাচর নিুলিখিত ক্রাইটেরিয়ার যে কোনো দুটির উপস্থিতি আবশ্যক নারীদেহে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন হরমোন উপস্থিতির প্রমাণ অনিয়মিত ঋতুস্রাব ডিম্বাশয়েসিস্ট পরীক্ষানিরীক্ষা সিরাম টেস্টোস্টেরন এলিস এফএসএইচ পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম ওজিটিটি চিকিৎসা জীবনযাত্রা ব্যবস্থাপনা চিকিৎসার শুরুতেই খাদ্য ব্যবস্থাপনার দিকে গুরুত্বপূর্ণভাবে নজর দিতে হবে খাদ্য ব্যবস্থাপনা রোগিনীর দৈহিক ওজন কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছাতে সাহায্য করবে বিপাকীয় প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটাবে যাতে করে ইনস্যুলিন রেজিস্ট্রেন্স কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে আদর্শ জীবনযাপন ব্যবস্থাপনা রোগিনীর হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাবে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের খাদ্য তালিকায় শর্করার আধিক্য কম থাকবে শকসবজি (আলু বাদে) রঙিন ফলমূল ও আমিষজাতীয় খাদ্য প্রাধান্য পাবে দৈহিক ওজন বিবেচনায় রেখে শারীরিক শ্রমের ব্যবস্থা করতে হবে ওষুধ মহিলাদের জন্ম নিয়ন্ত্রের জন্য ব্যবহৃত পিলগুলো যাতে স্বল্প মাত্রায় ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্ট্রেরন থাকে তা খুব সহায়ক ওষুধ মেটফরমিন অবাঞ্ছিত লোম দূর করবার ক্রিম প্রজনন সম্ভাবনা বৃদ্ধির ওষুধ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত নারীদের অধিকাংশই এ সমস্যার শারীরিক লক্ষণগুলোকে খুব দ্রুত বুঝতে পারেন না কেউ কেউ লক্ষণগুলো বুঝতে পারলেও সংকোচ বোধের কারণে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে দেরি করেন যেহেতু রোগটির ব্যাপকতা ও সুদূরপ্রসারী স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে তাই প্রজননক্ষম বয়সের সব নারীকে তার এ সমস্যা আছে কিনা জানার জন্য হরমোন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি নারী দেহের প্রজননতন্ত্রের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অঙ্গের নাম জরায়ু বা ইউটেরাস (Uterus) আর জরায়ুর নিচের দিকের অংশকে জরায়ুমুখ বা সারভিক্স (Cervix) বলে নারীদেহে যেসব স্থানে ক্যান্সার হয় তার মধ্যে জরায়ুমুখ ক্যান্সার (Cervical Cancer) অন্যতম বাংলাদেশে প্রতি বছর প্রায় ১২ হাজার নারী জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হয় আর ৬ হাজার মৃত্যুবরণ করে অথচ নিয়মিত জরায়ুমুখ পরীক্ষা করলে প্রাথমিক অবস্থাতেই এ ক্যান্সারের পূর্বলক্ষণ ধরা পড়ে এবং এই ক্যান্সার থেকে শতভাগ মুক্তি পাওয়া যায় এমনকি অপারেশন করে জরায়ু ফেলতেও হয় না নারীদের জরায়ুমুখ পরীক্ষা করার একটা পদ্ধতির নাম কলপোস্কপি কীভাবে কলপোস্কপি পরীক্ষা করা হয় সাধারণত একজন নারীরোগ বিশেষজ্ঞ হাসপাতাল বা তার ব্যক্তিগত চেম্বারে কলপোস্কপি পরীক্ষা করে থাকেন কলপোস্কপি (Colposcope) নামের একটি বিশেষ ক্যামেরার মাধ্যমে জরায়ুমুখ ও যোনিপথ অতি সূক্ষ্মভাবে পর্যবেক্ষণ করা হয় কোনো জায়গা অস্বাভাবিক মনে হলে সেখান থেকে কিছু কোষ বা সেল নিয়ে পরীক্ষা করা হয় একে প্যাপ স্মেয়ার (Pap smear) বলে প্রয়োজন হলে সন্দেহজনক স্থান হতে যন্ত্রের সাহায্যে চিমটি দিয়ে কোষ কলা (Tissue) নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য ল্যাবরেটরিতে পাঠানো হয় একে বায়োপসি (Biopsy) বলা হয় কলপোস্কপি পরীক্ষায় সাধারণত নিম্নলিখিত সমস্যাগুলো ধরা পড়ে জরায়ুমুখ বা সারভিক্সের ক্যান্সারের পূর্বলক্ষণ যোনিপথে/যোনিমুখে ক্যান্সারের পূর্বলক্ষণ জরায়ুমুখের প্রদাহ যৌন রোগ কী কী কারণে কলপোস্কপি পরীক্ষার উপদেশ দেয়া হয় বিবাহিত নারী যাদের দীর্ঘদিন যাবত তলপেটে ব্যথা দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব/অনিয়মিত রক্তস্রাব চিকিৎসক খালি চোখে দেখে জরায়ুমুখে কোনো সমস্যা আছে সন্দেহ করলে জরায়ুমুখের প্রাথমিক পরীক্ষা যেমন ভায়া/প্যাপস স্মেয়ারের রিপোর্টে সন্দেহ হলে এইচপিভি (HPV) বা হিউম্যান প্যাপিলোমা ভাইরাস টেস্ট পজিটিভ হলে জরায়ুমুখে দীর্ঘদিন ইনফেক্সন থাকলে নিজের অথবা স্বামীর একাধিক যৌনসঙ্গী থাকলে কলপোস্কপি পরীক্ষার পূর্বপ্রস্তুতি কী সাধারণত মাসিক চলাকালীন কলপোস্কপি পরীক্ষা করা হয় না মাসিকের রাস্তায় কোনো ওষুধ ব্যবহার করলে তা দুইতিন দিন আগে বন্ধ করতে হয় দুইতিন দিন সহবাস হতে বিরত থাকতে হয় বায়োপসি নেয়ার প্রয়োজন হলে ইকোস্প্রিন (Ecosprin) জাতীয় ওষুধ সাত দিন আগে বন্ধ করতে হয় খালি পেট/ভরা পেট এমন কোনো বাধ্যবাধকতা নেই কলপোস্কপি করতে কতক্ষণ সময় লাগে কলপোস্কপি পরীক্ষা করতে ২০৩০ মিনিট সময় লাগে তবে বায়োপসি নেয়ার প্রয়োজন হলে আরেকটু বেশি সময় লাগতে পারে এই পরীক্ষায় কোনো ব্যথা হয় কি কলপোস্কপি কোনো কষ্টদায়ক পরীক্ষা নয় কারও কারও সামান্য অস্বস্তি লাগতে পারে তবে বায়োপসি নেয়া হলে অল্প ব্যথা বা সামান্য রক্তক্ষরণ হতে পারে যার জন্য কয়েক দিন ওষুধ খাওয়ার প্রয়োজন হতে পারে এ পরীক্ষায় কোনো ঝুঁকি আছে কি পরিষ্কারপরিছন্ন পরিবেশে কলপোস্কপি পরীক্ষা করা হয় এবং পরীক্ষায় ব্যবহৃত সব ধরনের যন্ত্রপাতি জীবাণুমুক্ত করে ব্যবহার করা হয় তাই এ পরীক্ষায় কোনো প্রকার স্বাস্থ্য ঝুঁকি নেই কলপোস্কপি পরীক্ষার পর করণীয় কী কলপোস্কপি পরীক্ষার পরপরই বাসায় গিয়ে স্বাভাবিক কাজকর্মে ফিরে যাওয়া যায় তবে বায়োপসি নেয়া হলে দুইএক দিন মাসিকের রাস্তায় ব্যথা সামান্য রক্তস্রাব বা গাঢ় রঙের স্রাব যেতে পারে এজন্য এক সপ্তাহের মতো সহবাস থেকে বিরত থাকতে হয় চিকিৎসক কিছু ওষুধও দিতে পারেন কলপোস্কপি রিপোর্ট পেতে কত সময় লাগে কলপোস্কপি পরীক্ষার রিপোর্ট সঙ্গে সঙ্গেই হাতে পাওয়া যায় তবে প্যাপ স্মেয়ার বা বায়োপসি পরীক্ষার রিপোর্ট পেতে কয়েক দিন সময় লাগতে পারে কলপোস্কপি পরীক্ষার রিপোর্ট অস্বাভাবিক মানে কী কলপোস্কপি পরীক্ষার রিপোর্ট অস্বাভাবিক মানে নিচের সমস্যাগুলোর যেকোনো একটি ধরা পড়েছে আপনার জরায়ুমুখে প্রদাহ আছে জরায়ুমুখে অস্বাভাবিক কোষ বা সেল পাওয়া গেছে কোনো এক সময় এই কোষগুলো ক্যান্সারে রূপ নিতে পারে তাই আমরা এ অবস্থাকে ক্যান্সার পূর্ববর্তী লক্ষণ বলে থাকি যেগুলোকে রিপোর্টে CINI CINII CINIII হিসেবে উল্লেখ করা হয় আবারো বলছি এগুলো ক্যান্সার নয় এই কোষগুলো খুব সহজেই জরায়ুমুখ থেকে সরিয়ে ফেলে ক্যান্সার ঝুঁকি থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকা যায় খুব বিরল ক্ষেত্রে কলপোস্কপি পরীক্ষায় সরাসরি জরায়ুমুখ ক্যান্সার ধরা পড়তে পারে তার মানে এই মহিলা সচেতনতার অভাবে কখনই আগে জরায়ুমুখ পরীক্ষা করাননি কলপোস্কপি পরীক্ষার রিপোর্ট অস্বাভাবিক হলে কী করণীয় কলপোস্কপি পরীক্ষার রিপোর্ট অনুযায়ী চিকিৎসক যথাযথ পরামর্শ দেবেন মনে রাখতে হবে কলপোস্কপি পরীক্ষায় যে সমস্যাগুলো চিহ্নিত করা যায় তা চিকিৎসা দিয়ে শতভাগ নিরাময় করা যায় কলপোস্কপি পরীক্ষার রিপোর্ট ভালো মানে কী কলপোস্কপি পরীক্ষার ভালো রিপোর্ট আপনার জরায়ুমুখের সুস্থতা নিশ্চিত করে শুধু তাই নয় ভালো রিপোর্ট মানে আপনার যোনিপথ ও যোনিমুখেও কোনো সমস্যা নেই কলপোস্কপি পরীক্ষার রিপোর্ট ভালো হলে আবার কবে পরীক্ষা করতে হবে একবার কলপোস্কপি পরীক্ষার রিপোর্ট ভালো আসলে আগামী তিন বছরের মধ্যে আপনার জরায়ুমুখে ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা নেই কাজেই তিন বছর পর আবার পরীক্ষা করার উপদেশ দেয়া হয় শেষ কথা অশিক্ষা আর্থসামাজিক অবস্থা ও সচেতনতার অভাবে আমাদের দেশের নারীরা জরায়ুমুখ ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছেন তাছাড়া নারীরা সংকোচের কারণে রোগের লক্ষণগুলো বেশিরভাগ সময় লুকিয়ে রাখেন নিয়মিত জরায়ুমুখ পরীক্ষা করে প্রাথমিক অবস্থায় রোগ নির্ণয় বা রোগের পূর্বলক্ষণ শনাক্ত করা গেলে সামান্য চিকিৎসা দিয়ে জরায়ুমুখ ক্যান্সার থেকে মুক্ত থাকা যায় নিয়মিত জরায়ুমুখ পরীক্ষা করুন জরায়ু ক্যান্সার থেকে দূরে থাকুন অনিয়মিত মাসিক ঋতুস্রাব নিয়ে অনেক নারীকেই ভুগতে হয় মাসিক শুরুর পর যে কোনো বয়সের নারীদেরই অনিয়মিত মাসিক ঋতুস্রাবের সমস্যা দেখা দিতে পারে সাধারণত ২৮ দিনের সাত দিন আগে বা সাত দিন পরে মাসিক হলে এবং মাসিকের মেয়াদ পাঁচ দিনেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকলে তা অনিয়মিত বলে ধরা হয় আবার দেরিতে মাসিক হওয়া বা মিস করাও অনিয়মিত মাসিকের মধ্যেই পড়ে মাসিকের অন্যতম প্রধান কারণ হলো অতিরিক্ত ওজন বেশি হওয়া এবং অতিরিক্ত ডায়েট করে ওজন কমিয়ে ফেলা এ দুটি অনিয়মিত মাসিকের প্রধান কারণ এছাড়া হরমোনের সমস্যা ও থাইরয়েডের সমস্যার কারণেও অনিয়মিত মাসিক হতে পারে অনিয়মিত পিল খাওয়ার কারণেও অনিয়মিত মাসিক বা ইরেগুলার ব্লিডিং হয় এছাড়া হরমোনাল ফ্যাক্টরস অথবা অন্য কোনো ইনফেকশন থাকলেও এরকম ইরেগুলার ব্লিডিং হয় অনিয়মিত মাসিক এটা খুব বড় কোনো সমস্যা নয় এক্ষেত্রে পরীক্ষানিরীক্ষা করে অনিয়মিত মাসিকের কারণ খুঁজে বের করে সে অনুযায়ী চিকিৎসা দিলে মাসিক নিয়মিত হয়ে যাবে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার হিসাব অনুযায়ী বাংলাদেশে প্রতি বছর ১৫ হাজারের বেশি মানুষ স্তন ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে যার ৯৮ শতাংশ নারী এবং ২ শতাংশ পুরুষ প্রতি বছর শুধু স্তন ক্যান্সারে সাড়ে সাত হাজারের বেশি মহিলা মারা যাচ্ছে পুরুষদের যেমন ফুসফুস ক্যান্সার বেশি হয় তেমনি মহিলাদের স্তন ক্যান্সার বেশি হয় তবে পুরুষদের স্তন ক্যান্সার হতে পারে আবার মহিলাদেরও ফুসফুস ক্যান্সার হতে পারে যুক্তরাজ্যে প্রতি বছর ১০ লাখেরও বেশি মানুষ নতুন করে ক্যান্সারে আক্রান্ত হচ্ছে যার ১৮ শতাংশ মহিলা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এ সংখ্যা ৩২ শতাংশ শুরুতে রোগ নির্ণয় পূর্বক চিকিৎসা করা হলে অধিকাংশ রোগীরই অকাল মৃত্যু রোধ করা সম্ভব বেশির ভাগ রোগীদের ক্ষেত্রে ক্যান্সারের কারণ জানা যায় না স্তন ক্যান্সারের ঝুঁকি পারিবারিক ইতিহাস অর্থাৎ মা খালা বোন রক্তের সম্পর্ক যুক্ত পরিবারের একজনের ক্যান্সার হলে অন্যদের মধ্যে ক্যান্সার হওয়ার প্রবণতা বেশি লক্ষ করা যায় যারা নিয়মিত স্ক্রিনিং করান না বয়স ৪০ বছরের বেশি হলে কোনো উপসর্গ ছাড়াই চিকিৎসকের পরামর্শে ছয় থেকে বারো মাস অন্তর সব মহিলাকে ম্যামোগ্রাম করাতে হবে রুটিন পরীক্ষা তো করাতেই হবে ১২ বছরের আগে যদি ঋতুস্রাব শুরু হয় কারও ঋতুস্রাব যদি ৫৫ বছরের পরও চলতে থাকে প্রথম সন্তান যদি ৩৫ বছরের পর হয় স্তনে অন্য কোনো রোগ হয় যাদের সন্তান হয় না অর্থাৎ বন্ধ্যা যাদের উচ্চতা র্৫র্৮র্ বা তারও বেশি উপরোক্ত যে কোনো সমস্যা দেখা দিলে দ্রুত চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পরীক্ষানিরীক্ষা করাতে হবে স্তন ক্যান্সারের বিপত্তি থেকে পরিত্রাণের উপায় ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখুন কায়িক ও শারীরিক পরিশ্রম করুন প্রতি দিন ঘাম ঝড়িয়ে ৩০৪৫ মিনিট ব্যায়াম করুন প্রতিদিন ৪ ধরনের ফল ও সবজি খেতে হবে ধূমপান মদ্যপান থেকে বিরত থাকুন জন্ম বিরতিকরণ পিল সেবন থেকে বিরত থাকুন বিশেষ করে যাদের বয়স ৩৫ বছর পার হয়েছে ঋতুস্রাব বন্ধ হওয়ার পর অনেকেই হরমোন থেরাপি গ্রহণ করেন সেটি থেকে বিরত থাকুন দুগ্ধবতী মায়েরা অবশ্যই বাচ্চাকে ৬ মাস পর্যন্ত শুধু বুকের দুধ পান করাবেন কমপক্ষে ২ বছর বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ খাওয়াবেন ওষুধে রোগ সারায় আবার ওষুধেই স্তন ক্যান্সার হয় যদি কেউ টেমক্সিফেন অথবা রেলক্সিফেন ওষুধ দীর্ঘদিন সেবন করেন ফাইব্রোঅ্যাডিনোমা অনেক মহিলা যাদের বয়স ১৫৩৫ বছর বুকের স্তনে বা দুই দিকেই মার্বেলের মতো গোল গোল এক বা একাধিক চাকা অর্থাৎ মাংস দলা থাকতে পারে যা শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় এদের বৈশিষ্ট্য হচ্ছে মসৃণ রাবারের মতো মার্জিন সহজে বোঝা যায় নড়াচড়া করে ব্যথা থাকে না ১৫৪৫ বছর বয়সী মহিলাদের ১ থেকে ২ সেন্টিমিটার আকৃতির হতে পারে আবার অর্ধ সেন্টিমিটারও হতে পারে কেন হয় কারণ জানা যায়নি এটিকে বলা হয় বেনাইন অর্থাৎ শরীরের জন্য ক্ষতিকর নয় স্তন ক্যান্সারের সতর্ক সংকেত যখন চিকিৎসকের কাছে অতি শিগগির যাবেন বুকের মধ্যে শক্ত চাকা ঘন পুরো বা অমসৃণ একই স্থানে থাকে স্তন ফুলে গেলে গরম অনুভব হলে লাল হয়ে গেলে অথবা ত্বক কালো হয়ে গেলে স্তনের আকার আকৃতি যদি দ্রুত পরিবর্তন হতে থাকে স্তনের ত্বকে যদি গর্ত হয় বা কুঁচকে যায় নিপল যদি বেশি চুলকায় র‌্যাশ হয় ঘা হয় নিপল যদি হঠাৎ করে ফুলে যায় বা অংশ বিশেষ ফুলে যায় হঠাৎ করেই নিপল দিয়ে রক্ত বা সাদা যে কোনো তরল জাতীয় আঠালো পদার্থ নিঃসরণ হতে শুরু করে হঠাৎ করেই স্তনের মধ্যে ব্যথা শুরু হয়েছে তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে এমনটি হলে তখন আর দেরি নয় দ্রুত চিকিৎসকের কাছে যাবেন ক্যান্সারের একটি মূল্যবান স্লোগান হচ্ছে শুরুতে পড়লে ধরা ক্যান্সার রোগ যায় যে সারা নারীদের মেনোপজের পর হরমোনের পরিবর্তন যা ঘটে এ জন্য মধ্য দেশে জমতে পারে মেদ উষ্ণ ঝলক রাতে ঘাম মেজাজের চড়াইউতরাই বেশ নজরে পড়ে কিন্তু বাথরুম স্কেলে দেহ ওজন মাপা হয় না ওজনও বাড়ে শরীরে ওজন বিতরণ বদলে যায় তলপেটে জমতে থাকে মেদ মেনোপজের আগে আগে সে সময় ও পরে স্ত্রী হরমোন ইস্ট্রোজেন কমতে থাকে বিপাক হয় শ্লথ তখন ওজন হ্রাস করা হয়ে পড়ে কঠিন জমে মেদ তলপেটে এতে ডায়াবেটিস হৃদরোগ কিছু ক্যান্সারও আগাম মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়ে কী করা যায় ব্যায়াম করতে হবে নিয়মিত এরোবিক ব্যায়াম যেমন দ্রুত হাঁটা সাইকেল চালানো সাঁতার কাটা ভার উত্তোলন প্রতি সপ্তাহে অন্তত মোট ১৫০ মিনিট মাঝারি ও কঠোর ব্যায়াম যতদূর সম্ভব বসার চেয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন কারণ যত বেশি শরীর থাকে সচল তত বেশি ক্যালোরি পোড়ে বেশিরভাগ সময় ঋজু থাকুন হাঁটুন কথা বলুন কোনো গাড়ি দূরে পার্ক করে হেঁটে যান অফিসে কম্পিউটার নিয়ে যারা কাজ করেন তারা স্ট্যান্ডিং ডেসক ব্যবহার করুন খাবারের পরিমাণ কমান সঠিক সময়ে খান সকালে ভরপেট প্রাতঃরাশ মাঝারি মধ্য আহার ও রাতে হালকা খাবার মূল খাবার মধ্যাহ্নে ভালো রাতে হালকা খাবার বাছতে হবে বিজ্ঞজনোচিতভাবে স্বাস্থ্যকর চর্বি খান উদ্ভিজ্জ চর্বি যেমন জলপাই ও বাদাম এভোক্যাডো মনোযোগী হয় যেন খাওয়া অমনোযোগে আহার হয় বেশি ব্যায়ামে নতুন বৈচিত্র্য যেন থাকে যেমন ইয়োগা ওয়েট ট্রেনিং চাই সুনিদ্রা ব্যায়ামের জন্য খুঁজে নিন সঙ্গী ডাক্তারের পরামর্শ নিন মেয়েদের চুল পড়ে যাওয়াকে ডাক্তারি ভাষায় অ্যানড্রোজেনেটিক অ্যালোপিসিয়া বলে মেয়েদের মাথার উপরিভাগের চুল ও দুপাশের চুল পাতলা হয়ে যায় একতৃতীয়াংশ নারীর এ সমস্যা হয় প্রতিদিন ১০০ থেকে ১২৫টি চুল পড়ে স্বাভাবিকভাবেই চুল পড়ে যাওয়া তখনই সমস্যা যখন দিনে ১২৫টির বেশি চুল পড়ে এবং সেই চুল গজায় না চুল পড়ে যাওয়াকে দুই ভাগে ভাগ করা যায় অ্যানাজেন ইফফ্লুডিয়াম ও টেলোজেন ইফফ্লুভিয়াম নানা রকম ওষুধ ও কেমোথেরাপির জন্য যখন চুল পড়ে তখন তাকে অ্যানাজেন ইফফ্লুডিয়াম বলে আর চুলের ফলিকল যখন রেস্টিং স্টেজে যায় তখন তাকে টেলোজেন ইফফ্লুভিয়াম বলে চুলের ফলিকল রেস্টিং স্টেজে যাওয়া মানে চুল আর বড় না হওয়া এবং একসময় চুল ঝরে যাওয়া এর কারণ শারীরিক অসুস্থতা যে কোনো অস্ত্রোপচারের পর রক্তস্বল্পতা ওজন কমে যাওয়া হজমের সমস্যা মানসিক চাপ অতিরিক্ত কর্মব্যস্ততা থাইরয়েড হরমোনজনিত সমস্যা ডায়াবেটিস পলিসিসটিক ওভারি মূত্রনালির প্রদাহ গর্ভাবস্থা পরিবার পরিকল্পনার জন্য পিল খাওয়া ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়া অতিমাত্রায় ভিটামিন এ গ্রহণ উচ্চরক্তচাপের ওষুধ গ্রহণ ডায়েট ও চুল পড়া ওজন কমানোর জন্য অতিরিক্ত ডায়েট করা অনেক সময় চুল পড়ার কারণ অবশ্যই ডায়েটিশিয়ান নিউট্রিশনিস্ট কিংবা চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী খাবার তালিকা নির্ধারণ করা প্রয়োজন নির্দিষ্ট ডায়েটের সঙ্গে ভিটামিন ও মিনারেল সাপ্লিমেন্ট খাওয়া প্রয়োজন চুল ঝরে গেলেও আর নতুন চুল গজায় না শরীর সারাতে ব্যস্ত থাকে সব শক্তি এবং অনাদরে পড়ে যায় চুল এসব ক্ষেত্রে চুল পড়তে থাকে তিন মাস আবার চুল গজাতে সময় লাগে তিন মাস অর্থাৎ ছয় মাস সময় লাগে চুল স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরে আসতে তবে শারীরিক ও মানসিক চাপ খুব বেশি এবং দীর্ঘস্থায়ী হলে ছয় মাসের বেশি সময় ধরে চুল পড়তে পারে মেয়েদের জীবদ্দশায় বিশেষ পাঁচটি সময়ে শরীরের স্বাভাবিক হরমোন বা গ্রন্থিরসের তারতম্যের জন্য মুখগহ্বরে নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারে এ সময়গুলোতে মুখের যত্নে অধিকতর সচেতন থাকার বিষয়ে শক্তভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা তা না হলে স্বাভাবিক ও ক্ষণস্থায়ী এমন পরিবর্তন নানা অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে পর্যায়১ বয়ঃসন্ধিকাল ইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনে অধিকতর কারণে মাড়িতে রক্ত প্রবাহ বেশি থাকে ফলে সামান্য কিছুতেই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে মাড়ি ফুলে যেতে পারে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে ডেন্টাল ক্যারিজের প্রবণতাও বাড়তে পারে পর্যায়২ মেনস্ট্রয়েশন সময়কাল মাসের বিশেষ দিনগুলোতে রক্তে প্রোজেস্টেরন হরমোনের আধিক্যের জন্য মাড়ি উজ্জ্বল দেখায় ও ফুলে যায় মাড়িতে এপথাস আলসারসহ কিছু ঘা বা ক্ষত হতে পারে লালাগ্রন্থি ফুলে যেতে পারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাসিকের ২ থেকে ৩ দিন আগে এমন উপসর্গগুলো শুরু হলেও এগুলো ক্ষণস্থায়ী হয় পর্যায়৩ জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবনকাল প্রোজেস্টেরন সম্পর্কীয় ওষুধে মাড়িতে নানা ধরনের প্রদাহ দেখা দিতে পারে বিশেষ করে ওষুধ গ্রহণের প্রথম কয়েক মাস ইস্ট্রোজেন সম্পর্কীয় ওষুধ শরীরে প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেন কমিয়ে কৃত্রিম ইস্ট্রোজেন বাড়িয়ে দেয় ফলে মুখের একমাত্র নড়াচড়াক্ষম জয়েন্ট টেম্পেরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্টে নানা সমস্যার কারণে মুখ খুলতে খাবার চর্বণে এমনকি মুখ নাড়াচাড়া করতে কষ্ট হতে পারে পর্যায়৪ গর্ভকাল গর্ভাবস্থায় হরমোনের ব্যাপক তারতম্য ঘটে বিশেষ করে প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যাওয়াতে মুখের মধ্যকার জীবাণু সক্রিয় হয়ে ওঠে গর্ভাবস্থার ২ থেকে ৮ মাসের মধ্যে দাঁতে গর্ত দাঁত শিন শিন করা মাড়ি ফুলে গিয়ে রক্ত পড়া বা প্রেগনেন্সি ইপিউলিস খুব সাধারণ মুখ পরিষ্কারে অনিহা বা বমি বমি ভাবের জন্য মুখগহ্বর রোগের অভয়ারণ্য হয়ে ওঠে এ সময়টিতে অধিক সচেতন থাকতে হবে পর্যায়৫ মেনোপজকাল বয়স্কদের মেনোপজে মুখে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা খুব সাধারণ এর সঙ্গে যোগ হয় অন্যান্য রোগ নিয়ন্ত্রণে কোনো সেবনকৃত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সাধারণ মুখের স্বাদ কমে যাওয়া মুখে জ্বালাপোড়া করা একটুতেই ঝাল অনুভূতি ঠাণ্ডা বা গরম খাবারে অতিসংবেদনশীলতা মুখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে নানা পরিবর্তন স্পষ্ট হয় এ সময়ে ক্যারিজ বা দাঁত ক্ষয় মাড়ি রোগ চোয়ালের হাড় ক্ষয় থেকে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে করণীয় প্রত্যেকদিন নিয়ম মেনে সকালে নাস্তার পর ও রাতে ঘুমানোর আগে নরম টুথ ব্রাশ ও ফ্লোরাইডযুক্ত উন্নতমানের টুথপেস্ট দিয়ে নিয়ম মেনে ২ মিনিট মুখ পরিষ্কার বিশেষ প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে জীবাণু ধ্বংসকারক মাউথ ওয়াশ ব্যবহার দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থানে সঠিক পদ্ধতিতে ডেন্টাল ফ্লস বা ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার রাখা টুথ পিক বা কোনো ধাতব কাঠিকে শক্তভাবে নিরুৎসাহিত করা হয় ছয় মাস পরপর অনুমোদিত ডেন্টাল চিকিৎসকের পরিমর্শ নেয়া বিগত কয়েকমাস কোভিডকালে যৌক্তিক কারণে ডেন্টাল রোগীদের ঘরে বসে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে কষ্ট লাঘবে প্রচেষ্টার কথা বলা হলেও বর্তমান নিউ নরমাল সময়ে অনেক ডেন্টাল ক্লিনিক সাধ্যমতো করোনা রোধের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোগী দেখা শুরু করেছে এখন পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ডেন্টাল ক্লিনিকে না যাওয়াই ভালো আর প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই বিশ্বস্ত ডেন্টাল চিকিৎসকের সঙ্গে টেলিফোনের মাধ্যমে সময় ও তারিখ চূড়ান্তের পাশাপাশি কীভাবে নিজেকে বিপদমুক্ত রেখে ক্লিনিকে আসবেন সেটার ধারণা নিয়ে আসতে হবে কোভিডের সামান্য কোনো উপসর্গ সম্ভাবনা বা ইতিহাস থাকলে সেটা স্পষ্ট করতে হবে কারণ প্রতিটি রোগীর জন্য ক্লিনিকে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয় স্বাস্থ্যবান্ধব খাবার গ্রহণ ও মিষ্টিজাতীয় খাবার কম খাওয়া গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে মুখ পরিষ্কার রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা বিশেষ প্রয়োজনে মেনপোজে গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন থেরাপি শরীরের অন্যান্য রোগকে নিয়ন্ত্রণ ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা প্রতিদিন সময় করে হাঁটা বা ব্যায়ামের অভ্যাস করা ফুল এবং শিশু পৃথিবীর সবচেয়ে সুন্দর সৃষ্টি সবচেয়ে কোমল সবচেয়ে নিষ্পাপ সন্তান জন্মলাভ তাই একটি পরিবারের জন্য অত্যন্ত আনন্দের বিষয় তার মধ্যে যদি আবার হয় যমজ সন্তান তাহলে তো আর কোনো কথাই নেই আনন্দের যেন শেষই হয় না তবে এই ব্যাপারটা যতটা না আনন্দের ততোটা ঝুঁকিরও যমজ সন্তান দুই ধরনের হয় একটা হচ্ছে যারা হুবহু একই রকম দেখতে তাদের চারিত্রিক বৈশিষ্ট্যটা অনেকটা একই রকম ওদেরকে আমরা বলি আইডেন্টিক্যাল টুইন আরেকটা হচ্ছে হুবহু দেখতে একই রকম না ভাইবোন যেমন হয় বা বোনবোন বা ভাইভাই যেমন হয় সেইরকম তো যেটা প্রথমে বললাম সেটা হচ্ছে আইডেন্টিক্যাল টুইন আর যারা দেখতে এক রকম না বা তাদের বৈশিষ্ট্য একরকম নাও হতে পারে সেটা হচ্ছে ফ্যাটার্ন্যাল টুইন আইডেন্টিক্যাল টুইনের কারণ খুব বেশি একটা জানা যায় না যেমন একটা ডিম্বাণু দিয়ে যদি একটি শুক্র কীটের মিলন হয় একটা ভ্রুণ তৈরি হয় তখন যদি ওইটা হার্ড হয়ে যায় তখন হবে হুবহু এক রকম দেখতে জমজ বাচ্চা ওদের কারণ বেশি একটা জানা যায় না যমজ সন্তান কেন হয় ফ্যাটারম্যান টুইন বা দেখতে ভাই বোনের মত ওদের ব্যাপারে বলা হচ্ছে যে জাতিগত কিছু কারণ থাকতে পারে যেমন আফ্রিকানরা আফ্রিকানদের অনেক বেশি জমজ বাচ্চা হয় এশিয়ানদের চাইতে এছাড়া মায়ের বয়সটা একটা ব্যাপার যেমন মায়ের বয়স ৩০৩৫ এর মধ্যে হয় তাহলেও জমজ বাচ্চা হবার সম্ভাবনা থাকে অথবা আজকাল যেটা বেশি দেখতে পাচ্ছি যে বন্ধ্যাত্ব চিকিৎসার জন্য যে ঔষধগুলো প্রয়োগ করা হয় এটার জন্য অনেক জমজ বাচ্চা আমরা দেখতে পাচ্ছি কারণ ওই ওষুধগুলোর কাজ হচ্ছে একটু বেশি বেশি ডিম ফুটানো আমরা জানি যে প্রতিটা মেয়েরই মাসিক হওয়ার পর প্রতি মাসে একটা করে ডিম ফুটবে এই ওষুধগুলোর দ্বারা একটু বেশি বেশি ডিম ফুটে যার জন্য জমজ বাচ্চা হওয়ার সম্ভাবনা ওদের একটু বেশি তবে আরেকটা সায়েন্টিফিক কারণ হচ্ছে জমজ মায়ের মেয়ের জমজ বাচ্চা হতে পারে কারণ ওখানে কিন্তু একটা জন্মগত ধারা আসে মায়ের যদি সেই জিনটা থাকে সেই জিনটা যদি মেয়ের থাকেযেটা থেকে ডিম একটু বেশি ফুটবেতাহলে যে মায়ের যমজ সন্তান থাকে সে মায়ের মেয়েরও যমজ সন্তান হতে পারে মানে জন্মগত একটা দিকও আছে আর জোড়া কলা বা জয়েন্ট কলা খেলে নাকি যমজ সন্তান হয় এমন ধারণা নিতান্তই কুসংস্কার এ সময়ে গর্ভবতী মারা যৌক্তিক কারণেই বেশি আতঙ্কিত নিয়মমাফিক ডাক্তার চেকআপের ধারাবাহিকতায় এখন অনেক সতর্ক থাকতে হচ্ছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে টেলিপরামর্শের আশ্রয় নিতে হচ্ছে গর্ভাকালীন দাঁত ও মুখের যত্নের বিষয়ে স্বচ্ছ ধারণা থাকা জরুরি তা না হলে সামান্য অবহেলা থেকে দাঁতে গর্ত ব্যথা মুখ ফুলে যাওয়া ও মাড়ি রোগের মতো নানা জটিলতা তৈরি হতে পারে কারণ এ সময়ে নানা পরিবর্তন মুখের অভ্যন্তরের স্বাভাবিক স্বাস্থ্যকর পরিবেশ নষ্ট করে যেমন হরমোনাল তারতম্য শুরুতে বমি বমি ভাব বিশেষ করে টুথপেস্টের প্রতি অনিহা রুচির পরিবর্তনে টক বা মিষ্টিজাতীয় খাদ্যের প্রতি দুর্বলতা শরীরে অতিরিক্ত পুষ্টি চাহিদা ক্ষেত্র বিশেষে প্রেগন্যান্সিতে ডায়াবেটিস হাইপারএসিডিটি বা উচ্চরক্তচাপ হতে পারে জরুরি কিছু ওষুধ থেকে মুখের শুষ্কতা গর্ভকালীন মুখের যত্ন কেন জরুরি ডেন্টাল রোগের বেশিরভাগ স্থায়ী চিকিৎসা কেবল টেলিমেডিসিনে দেয়া সম্ভব নয় প্রয়োজন পড়ে কার্যকর চিকিৎসা আর করোনা মহামারীর এ সময়ে ঘরের বাইরে বের হওয়াটাই ঝুঁকিপূর্ণ তাই মুখের সঠিক যত্নের মাধ্যমে যাতে চিকিৎসকের শরণাপন্ন না হতে হয় সেদিকে মনোযোগী হতে হবে গর্ভকালীন প্রথম ও শেষ তিন মাস দাঁত ও মুখের অনেক কার্যকর চিকিৎসা দেয়া যায় না এ সময়টিকে অত্যন্ত স্পর্শকাতর হিসেবে বিবেচনা করা হয় ডেন্টাল চেয়ারে অবস্থান ওষুধ বা এক্সরে সব বিষয়েই অধিক বিধিনিষেধ চলে আসে আবার ডেন্টাল কষ্ট পুষে রাখার সুযোগও নেই কারণ অবহেলার কারণে এ সময়ে ডেন্টাল রোগ থেকে বড় ধরনের জটিলতা তৈরি হতে পারে উন্নত বিশ্বের কিছু গবেষণা জানায় অপরিণত শিশু জন্মের পেছনে প্রায় ১৮ শতাংশ দায়ী মাড়ি রোগ বিকলাঙ্গ বা অপুষ্ট শিশু জন্মের পেছনেও মায়েদের ডেন্টাল রোগের সম্পর্ক মিলছে কোভিডের এ সময়ে গর্ভবতী মারা অনেক সময় তাদের নির্ভরযোগ্য প্রসূতি বিশেষজ্ঞের পরামর্শ ছাড়া সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম বা অন্য কোনো সূত্র থেকে করোনারোধক নানা দিকনির্দেশনা দেখে মানার চেষ্টা করছে বা সামান্য জ্বর বা কাশিতে নানা ওষুধ বা বিশেষ কোনো ব্যায়াম করছে যা অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হতে পারে তাই এ ধরনের দিকনির্দেশনা বা যে কোনো ওষুধ সেবনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া বাঞ্ছনীয় গবেষকরা এখন পর্যন্ত কোভিড গর্ভবতী নারীদের গর্ভের শিশু আক্রান্তের প্রমাণ পাননি তবে অবহেলিত মুখের অভ্যন্তরে কিছু ব্যাকটেরিয়া কোভিড রোগীদের দুর্বল ফুসফুসে গিয়ে ভয়ংকর ব্যাকটেরিয়াল জটিলতার সৃষ্টি করতে পারে করণীয় গর্ভধারণ সিদ্ধান্তের শুরুতে ডেন্টাল চিকিৎসকের পরামর্শ নেয়া ও দাঁত পরিষ্কার এবং ফ্লস ব্যবহারের সঠিক নিয়ম শেখা নিয়ম মেনে সকালে নাস্তার পর ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে ২ মিনিট ধরে ছোট মাথার নরম টুথব্রাশ ও মানসম্মত পেস্ট দিয়ে দাঁতের সব পৃষ্ঠ পরিষ্কার ও ডেন্টাল ফ্লস করা মর্নিং সিকনেস বা বমি বমি ভাব নিয়ন্ত্রণে ব্রাশের সময় মনকে অন্যদিকে যেমন ভালো কোনো স্মৃতি আল্লাহকে স্মরণ বা গান শোনা যেতে পারে বমি হলে তার এক ঘণ্টার মধ্যে ব্রাশ না করা শ্রেয় খুব অস্বস্তি হলে পেস্ট ছাড়া ব্রাশ ব্যবহার ও মাড়ি ম্যাসাজ করতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শে ফ্লোরাইড বা অন্য কোনো জীবাণুনাশক মাউথওয়াশ ব্যবহার করা যেতে পারে পুষ্টিকর খাবারে সর্বাধিক গুরুত্ব দিতে হবে গর্ভধারণের ছয় সপ্তাহ থেকে গর্ভের শিশুর দাঁত গঠনপ্রক্রিয়া শুরু হয় এ সময়ে প্রচুর ক্যালসিয়ামসমৃদ্ধ খাবারের প্রয়োজন পড়ে মিষ্টিজাতীয় খাবারের পরিবর্তে শরীরের অবস্থার ওপর নির্ভর করে চিকিৎসকের পরামর্শে স্বাস্থ্যবান্ধব খাবার গ্রহণ করতে হবে মুখের যে কোনো অস্বাভাবিকতায় ডেন্টাল চিকিৎসকের টেলিপরামর্শ নেয়া জরুরি চিকিৎসক কষ্টের ধরন ও গর্ভকালীন সময় বুঝে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা দেবেন একটি পরিবারে স্বামীস্ত্রীর মধ্যে সেতুবন্ধ হচ্ছে সন্তান সন্তান না থাকলে স্বামীস্ত্রী একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর যেমন দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ে পড়ে তেমনি সামাজিকভাবেও নানা ধরনের প্রশ্নের মুখোমুখি হয় সেজন্য নিরবচ্ছিন্ন ও হেলদি সম্পর্কের জন্য পরিবারে সন্তান কাম্য নানা কারণে আমাদের সমাজে সন্তানধারণ ক্ষমতা হারাচ্ছেন নারী সন্তান না হওয়ার ক্ষেত্রে পুরুষও কম দায়ী নয় বন্ধ্যত্ব বলতে আমরা বুঝি যদি সন্তানপ্রত্যাশী হয়ে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার না করে এক বছর একই ছাদের নিচে স্বামীস্ত্রী থাকেন কিন্তু তারপরও স্ত্রী গর্ভধারণ না করেন এমতাবস্থায় সাধারণত দেখা যায় প্রথম এক বছরের মধ্যে আশি ভাগ দম্পতি সন্তান লাভ করে থাকে দশ ভাগ সন্তান লাভ করে দ্বিতীয় বছরে বাকি দশ ভাগ কোনোভাবেই সন্তান পায় না আমরা যদি বন্ধ্যত্বের কারণ খুঁজতে যাই তাহলে প্রথমে দেখতে হবে সন্তান কীভাবে জন্ম নেয় একজন মেয়ে শিশুর প্রথম দিকে ডিম্বাণুর পরিমাণ থাকে দশ থেকে বিশ লাখ ধীরে ধীরে সেই শিশু যখন প্রাপ্তবয়স্ক হয় বা মাসিকের সময় হয় (আমাদের দেশে মাসিকের সময় দশ থেকে চৌদ্দ বছর) তখন মেয়েদের ডিম্বাণুর পরিমাণ থাকে চল্লিশ হাজার বাকি ডিম্বাণুগুলো নষ্ট হয়ে যায় এ সময় (১০১৪ বছর) থেকে ৫২ বছর বা আরও নির্দিষ্ট করে বললে ৪০ বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি মাসে বিপুল সংখ্যক ডিম্বাণু নষ্ট হয়ে যাচ্ছে প্রাপ্তবয়স্ক নারীর শুধু একটি ডিম্বাণু প্রতি মাসে পরিস্ফুটন হয় এ মাসিকের সময়টি হচ্ছে ২৮ থেকে ৩০ দিন ১৩ বা ১৪তম দিনে ডিম্বাণু ফোটে সেটি তখন ডিম্বনালিতে আসে যদি সে বিবাহিত হয় তাহলে স্বামীর সঙ্গে মিলিত হওয়ার পর শুক্রাণুুর সঙ্গে নিষিক্ত হয় তখন জাইগোট তৈরি হয় সেটি পরে জরায়ুর ভেতর ঢোকে জরায়ুকে আঁকড়ে ধরে ভ্রূণ তৈরি হয় ভ্রূণটি ধীরে ধীরে বড় হয়ে মানব শরীরে রূপ নেয় সেটি প্রসবের মাধ্যমে পৃথিবীতে আসে এভাবে জন্ম নেয় মানব শিশু এটি হচ্ছে সন্তান জন্ম দেয়ার স্বাভাবিক পদ্ধতি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় Polycystic Ovarian Syndrome এ সমস্যা হয় এছাড়া থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে বা Prolectine হরমোন বেড়ে গেলে ডিম্বাণু পরিস্ফুটন নাও হতে পারে বা বড় নাও হতে পারে এছাড়া এন্ড্রোমেট্রোসিস্টের কারণেও অনেক সময় ডিম্বাণু বড় না হওয়া বা পরিস্ফুটন না হওয়ার ঘটনা ঘটতে পারে আরেকটি বিষয় হল মানবদেহে যেসব প্রজননতন্ত্র আছে জরায়ু জরায়ুর দুপাশে ডিম্বনালি আছে তার নিচে আছে মাসিকের রাস্তা বা যোনিপথ যদি কারও ডিম্বনালিতে সমস্যা থাকে বা বাধা থাকে সেক্ষেত্রেও স্বাভাবিক সন্তান ধারণে সমস্যা দেখা দেয় বাধাটা প্রধানত হয় ইনফেকশন থেকে ইনফেকশনের কারণে কারও ডিম্বনালি যদি কেটেই ফেলা হয় বা কারও যদি টিউমার লাইগেশন করে দেয়া হয় সেক্ষেত্রে স্বামীস্ত্রী মিলন করলেও ডিম্বাণু নিষিক্ত হবে না এবার আসা যাক জরায়ুর ক্ষেত্রে জরায়ুতে টিউমার হতে পারে এর ফলে যদি কোনো সমস্যা হয় ভ্রূণটা যদি জরায়ুতে প্রতিস্থাপন করার সুযোগ না থাকে বা জরায়ুর চামড়া যদি কোনো কারণে পাতলা হয় তাহলে ভ্রূণ সেখানে প্রতিস্থাপন হবে না তখন ওই নারী সন্তান ধারণে অক্ষম বলে বিবেচিত হবেন এবার আসা যাক জরায়ুর মুখের সমস্যায় ইনফেকশন হয়ে যদি কোনো সমস্যা হয় জরায়ুর মুখ যদি সংকীর্ণ হয় বা যদি বীর্য কোনো কারণে জরায়ুর মধ্যে প্রবেশ করতে বাধা পায় তাহলেও সন্তান লাভ করতে পারে না সবশেষে আসা যাক যোনিপথের কথায় যোনিপথ যদি বাঁকা থাকে যোনিপথে যদি কোনো ধরনের পর্দা থাকে বা যোনিপথের মুখে যদি কিছু থাকে তাহলে স্বামীস্ত্রী সহবাস করতে পারেন না বা কোনো কারণে যদি স্পার্ম জরায়ুতে না ঢুকতে পারে তাহলেও সন্তান হবে না প্রজননতন্ত্রের আশপাশে যদি কোনো সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে বাচ্চা হতে বাধা সৃষ্টি করে আর কখনও কখনও সন্তান জন্ম না নেয়ার পেছনে কোনো কারণই থাকে না অর্থাৎ স্বামীস্ত্রী কারও কোনো সমস্যা নেই দুজনেই সুস্থ এরপরও সন্তান গর্ভে আসে না এমন ঘটনা ঘটতে পারে শতকরা ১০১৫ ভাগ ক্ষেত্রে এমনটি ঘটে থাকে পুরুষদের যেসব সমস্যায় সন্তান হয় না পুরুষের শারীরিক সমস্যার জন্যও সন্তান জন্ম না নিতে পারে পুরুষের শুক্রাণু যদি না থাকে বা শুক্রাণু যদি কম থাকে বা যদি তাদের সহবাসে কোনো সমস্যা হয় সেক্ষেত্রে সন্তানের জন্ম হবে না নানা কারণে পুরুষের শুক্রাণু নষ্ট হয় পুরুষরা অনেক সময় গরমে কাজ করেন বিশেষ করে যারা মধ্যপ্রাচ্যে থাকেন তাদের প্রচুর গরমে কাজ করতে হয় গরম পানিতে গোসল করলে বা নাইলন আন্ডারওয়্যার পরলেও শুক্রাণু নষ্ট হয় ছোট বেলায় কারও যদি মামস হয় বা লিঙ্গ ও অণ্ডকোষ বা তার আশপাশে যদি কোনো অপারেশন হয় বা সিফিলিস গনোরিয়াজাতীয় কোনো যৌন রোগ হয় সেক্ষেত্রে শুক্রাণু নষ্ট হতে পারে আবার অনেকে নানা ধরনের ওষুধ খান যেসব ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ার ফলে সন্তান জন্ম দেয়ার ক্ষমতা হারাতে হয় অনেক সময় অজানা কারণেও স্বামীস্ত্রী সন্তান গর্ভধারণ বা জন্মদানের ক্ষমতা হারাতে পারেন নারীদেহে এন্ড্রোজেনের বা পুরুষ যৌন হরমোন আধিক্যের কারণে যে সমস্যা দেখা দেয় সেটিকে পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম বলা হয়ে থাকে বালিকা ও নারীদের প্রজননক্ষম সময়ে এই সমস্যা বেশি দেখা দেয় বাংলাদেশে এ রোগের হার ২৫ শতাংশের কাছাকাছি হবে বলে ধরে নেওয়া হয় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমের প্রভাবে বিভিন্ন লক্ষণ দেখা দিতে থাকে যেমন ক অনিয়মিত মাসিক খ অতিরিক্ত রক্তস্রাব গ মুখে ও শরীরে অত্যধিক লোম (পুরুষালি) ঘ ব্রণ মুখে ও শরীরের অন্যান্য অংশে আরও কিছু শারীরিক সমস্যা থাকতে পারে তলপেটে ব্যথা মকমলের মতো কালো ত্বক (ঘাড় বগল ইত্যাদি জায়গায়) বন্ধ্যত্ব রোগীদের টাইপ২ ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যায় এদের অনেকেই দৈহিক স্থূলতায় আক্রান্ত হয় নাকডাকা ও ঘুমের সময় হঠাৎ করে শ্বাস বন্ধ হওয়া হৃদরোগের ঝুঁকি বেড়ে যাওয়া মানসিক ভারসাম্যহীনতা ও জরায়ু ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পেতে পারে জিনগত ত্রুটি আছে এমন কিশোরীর দৈহিক ওজন বৃদ্ধি পাওয়া খুব কম শারীরিক শ্রম সম্পাদন করা ও ঝুঁকিপূর্ণ খাবার খাওয়া ইত্যাদি এ রোগের আশঙ্কা বাড়িয়ে দেয় পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে ডিম্বাশয় অতিরিক্ত পরিমাণে টেস্টোস্টেরন হরমোন তৈরি করতে উদ্দীপ্ত হয় যার পেছনে পিটুইটারি গ্রন্থির অতিরিক্ত এলএইচ (LH) নিঃস্বরণ ও দেহে ইনসুলিন রেজিস্ট্রেন্সের উপস্থিতিই কারণ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোম নাম হওয়ার প্রধান কারণ হল ডিম্বাশয়ে বিভিন্ন বয়সি বিভিন্ন আকারের বিভিন্ন সংখ্যার সিস্ট থাকবে রোগ শনাক্তকরণ নিম্নলিখিত ক্রাইটেরিয়ার যে কোনো দুটির উপস্থিতি আবশ্যক নারীদেহে অতিরিক্ত এন্ড্রোজেন হরমোন উপস্থিতি অনিয়মিত ঋতুস্রাব ডিম্বাশয়ে সিস্ট পরীক্ষানিরীক্ষা সিরাম টেস্টোস্টেরন এলিস এফএসএইচ পেটের আল্ট্রাসনোগ্রাম ওজিটিটি চিকিৎসা জীবনযাত্রা ব্যবস্থাপনা চিকিৎসার শুরুতেই খাদ্য ব্যবস্থাপনার দিকে নজর দিতে হবে রোগীর দৈহিক ওজন কাক্সিক্ষত মাত্রায় পৌঁছতে সাহায্য করবে বিপাকীয় প্রক্রিয়ার উন্নতি ঘটাবে যাতে করে ইনসুলিন রেজিস্ট্রেন্স কমে যাওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পাবে আদর্শ জীবনযাপন ব্যবস্থাপনা রোগীর হৃদরোগ ও ডায়াবেটিস হওয়ার ঝুঁকি কমাবে এ রোগীদের খাদ্য তালিকায় শর্করার আধিক্য কম থাকবে শাকসবজি (আলু বাদে) রঙিন ফলমূল ও আমিষজাতীয় খাদ্য প্রাধান্য পাবে দৈহিক ওজন বা বিএমআই বিবেচনায় রেখে শারীরিক শ্রমের ব্যবস্থা করতে হবে ওষুধ মহিলাদের জন্ম নিয়ন্ত্রণের জন্য ব্যবহৃত পিলগুলো যাতে স্বল্প মাত্রায় ইস্ট্রোজেন ও প্রজেস্ট্রেরন থাকে তা সহায়ক ওষুধ মেটফরমিন অবাঞ্ছিত লোম দূর করার ক্রিম প্রজনন সম্ভাবনা বৃদ্ধির ওষুধ পলিসিস্টিক ওভারি সিন্ড্রোমে আক্রান্ত নারীদের অধিকাংশই এ সমস্যার শারীরিক লক্ষণগুলো খুব দ্রুত বুঝতে পারেন না কেউ কেউ লক্ষণগুলো বুঝতে পারলেও সংকোচ বোধের কারণে চিকিৎসকের শরণাপন্ন হতে দেরি করেন যেহেতু রোগটির ব্যাপকতা ও সুদূরপ্রসারী স্বাস্থ্য ঝুঁকি আছে তাই প্রজননক্ষম বয়সের সব নারীকে তার এ সমস্যা আছে কিনা জানার জন্য হরমোন বিশেষজ্ঞের শরণাপন্ন হওয়া জরুরি • ঘুমের মধ্যে উত্তেজক স্বপ্ন দেখার মধ্য দিয়ে বীর্যপাত হওয়া • সাধারণত ১০১২ বছর বয়সের মধ্যে কিশোরদের স্বপ্নদোষ শুরু হয় স্বপ্নদোষ হলো • বয়ঃসন্ধিকালে এটি একটি স্বাভাবিক ব্যাপার • কারো ক্ষেত্রে বেশী কারো ক্ষেত্রে কম আবার কারো ক্ষেত্রে নাও হতে পারে • ঘুমের মধ্যে স্বপ্নদোষ হলে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন হতে হবে • খারাপ ছেলেদের স্বপ্নদোষ হয় • স্বপ্নদোষ হলে স্বাস্থ্য খারাপ/নষ্ট হয়ে যায় • স্বপ্নদোষ হলে যৌন ক্ষমতা কমে যায় • স্বপ্নদোষ একটি যৌনরোগ রক্তস্রাব মাথাব্যথা ও চোখে ঝাপসা দেখা খিঁচুনি ভীষণ জ্বর বিলম্বিত প্রসব বা প্রসবের সময় বাচ্চার মাথা ছাড়া অন্য কোন অঙ্গ প্রথমে বের হওয়া যদি গর্ভবতী মা নিজেকে শারীরিকভাবে সুস্থ মনে করেন তবে এই সময়ে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে না গিয়ে প্রয়োজনে ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিন স্বাস্থ্য কেন্দ্র গর্ভাবস্থায় খুব জরুরী হলেই শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যান সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করুন যেমন পরিবহনকে নিরাপদ করা সব সময় মাস্ক ব্যবহার করা যথাযথ নিয়ম মেনে হাত ধোয়া গর্ভবতী মাকে নিরাপদ রাখতে প্রসবের আগে প্রসবের সময় এবং প্রসব পরবর্তী সময়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সকল নিয়মকানুন মেনে চলুন স্বামীরা সংসারের কাজগুলো করার বিষয়ে সচেতন হোন এবং গর্ভবতী মাকে আরো বেশি বিশ্রামের সুযোগ করে দিন নিরাপদ প্রসবের জন্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সাথে অথবা স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ করুন এবং কিছু সঞ্চয় রক্তদাতা যানবাহন ঠিক করে রাখুন প্রসূতি স্ত্রীর ব্যাগ যেটি ডেলিভারির সময় স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যাবেন সেটি আগে থেকেই গুছিয়ে রাখুন ব্যাগে নিতে পারেন শুকনা খাবার মোবাইল নরম কাপড় খাবার পানি ফ্লাস্ক ছোট একটি পাতিল মায়ের কাপড় সাবান/গুঁড়া সাবান ও মাস্ক | যদি গর্ভবতী মা করোনাভাইরাসে আক্রান্ত বা সন্দেহভাজন হয়ে থাকে তবে ডেলিভারির সময় স্বাস্থ্যকর্মীকে নিজের এবং উপস্থিত অন্যদের সুরক্ষার জন্য অতিরিক্ত সতর্কতা অবলম্বন করতে হবে প্রসবের সময় স্বাস্থ্যকর্মীকে পিপিই হাতে গ্লাভস মেডিকেল মাস্ক নিয়ম মেনে ব্যবহার করতে হবে জন্মের পর পরই শিশুকে মায়ের ত্বকের সাথে রাখতে হবে এবং এক ঘন্টার মধ্যে বুকের দুধ খাওয়ানো শুরু করতে হবে এবং ঘন ঘন বুকের দুধ খাওয়াতে হবে তবে এসময় মা এবং স্বাস্থ্যকর্মী উভয়কেই মাস্ক ব্যবহার করতে হবে শিশুকে ধরার আগে ও পরে হাত জীবাণুমুক্ত করে নিতে হবে প্রসূতি মা যখন বাড়ি ফিরে যাবেন তখন তাড়াতাড়ি রোগমুক্ত হওয়ার জন্য তার বাড়তি সর্তকতা অবলম্বন করতে হবে এবং বাড়তি বিশ্রাম নিতে হবে করোনাভাইরাস সময়কালে শিশুকে দেখার জন্য আত্মীয় স্বজন পাড়াপ্রতিবেশিকে বাড়িতে আসতে নিষেধ করতে হবে পরিবার কল্যাণ সহকারীর (FWA) সাথে • স্যাটেলাইট ক্লিনিকে কমিউনিটি ক্লিনিকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে (UH & FWC) উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে • মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (MCWC) জেলা সদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে • দুর্যোগকালীন সময়ে স্বামীস্ত্রী মিলে আলোচনা করে পরিবার পরিকল্পনার কোন পদ্ধতিটি গ্রহণ করবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন এবং নিজেদেরকে ঝুঁকিমুক্ত রাখুন •যেকোনো পদ্ধতির সঠিক ব্যবহারবিধি সুবিধা/অসুবিধা বিষয়ক তথ্য পেতে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করুন •পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বামী হিসেবে আপনার স্ত্রীকে সহায়তা করুন •পদ্ধতি গ্রহণকালীন সময়ে কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র অথবা স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন পরিবার কল্যাণ সহকারী বা স্বাস্থ্য সহকারী কমিউনিটি ক্লিনিক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্ৰ জেলা সদর হাসপাতাল মডেল পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক এনজিও/ বেসরকারী ক্লিনিক প্রতিদিন গোসল করাসহ নিজেকে পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা তা নাহলে রোদে শুকানো পরিষ্কার সুতি কাপড় ব্যবহার করা মাছমাংসসহ পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ও পরিমাণমতো পানি পান করা মাসিক একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া তাই এসময় কিশোরীকে দৈনন্দিন কাজে অভ্যস্ত হতে এবং স্কুলে যেতে উৎসাহিত করুন নিরাপদ পরিবেশে গোসল করুন ও পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকুন স্যানিটারি ন্যাপকিন বা রোদে শুকানো শুকনো কাপড় ব্যবহার করুন যতটুকু সম্ভনিয়মিত ব পুষ্টিকর খাবার খান ও পর্যাপ্ত পরিমাণে নিরাপদ পানি পান করুন মাসিকের সময় তলপেটে ব্যথা হলে যদি সম্ভব হয় তাহলে ব্যথার ঔষধ খান হালকা ব্যায়াম গরম পানির সেঁক দিলে অনেক সময় ব্যথা কমে যায় আলাপন হেল্পলাইন ০৯৬১২ ৬০০৬০০ যেকোনো দুর্যোগকালীন সময়ে দায়িত্ববান ও সংবেদনশীল মাবাবা হই কিশোরীদের সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন থাকি ও বাল্যবিয়েকে 'না' বলি ত্রাণ বা অন্য কোনো জরুরী সেবা নেয়ার সময় আপনাকে যদি কেউ কোনো কুপ্রস্তাব দেয় বা গায়ে অযাচিতভাবে স্পর্শ করে তবে সে যেই হোক না কেনো দৃঢ়ভাবে 'না' বলুন বাবামাকে বা অভিভাবককে না জানিয়ে কারো কাছ থেকে কোনো উপহার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন নির্জন এবং অন্ধকার জায়গাগুলো থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন প্রয়োজনে টর্চ ব্যবহার করুন এবং বাঁশি বাজান শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অংশগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকুন ঘরে বা বাহিরে যেকোনো জায়গায় নির্যাতনের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে জোরে কথা বলুন প্রয়োজনে চিৎকার দিন পারিবারিক নির্যাতনের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত কারো সহায়তা নিন আপনার অনুমতি না নিয়ে কাউকে ছবি তুলতে দিবেন না ফোনে কেউ বাজে উক্তি করলে বা এস এম এস পাঠালে তাকে এড়িয়ে চলুন ৯৯৯ অথবা ১০৯ কল করুন হটলাইন ১০৯৮ ০৯৬১২৬০০৬০০ ■ ছোটবড় বিষয়ে দ্বিধাদ্বন্দ্বে ভোগে কৌতূহলী হয় ■ আবেগপ্রবণ হয় ■ বিপরীত লিঙ্গের প্রতি কৌতূহলী হয় ■ অপরের মনোযোগ বেশি দাবী করে ■ যে কোনো ধরনের ঝুঁকিপূর্ণ আচরণে জড়িয়ে পড়ে ■ গলার স্বর ভেঙে যায় ■ শরীরের উচ্চতা ওজন বৃদ্ধি পায় এবং কাঁধ চওড়া হয় ■ গোঁফের রেখা দেখা দেয় ■ ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত হয় ও মুখে ব্রন উঠতে পারে ■ বগলে ও যৌনাঙ্গে চুল গজায় মাসিক শুরু হয় শরীরের উচ্চতা ও ওজন বৃদ্ধি পায় স্তন বড় হতে থাকে মুখে ব্রন উঠতে পারে বগলে ও যৌনাঙ্গে চুল গজায় বাবামা অথবা পরিবারের বড় সদস্যদের সাথে খোলামেলা আলোচনা করা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবাদানকারীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা প্রতিদিন গোসল করাসহ নিজেকে পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন রাখা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করা মাছমাংসসহ পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ও পরিমাণমতো পানি পান করা প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ বা যৌনরোগ হলে না লুকিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে যৌনসঙ্গীকেও (যদি থাকে) একসাথে চিকিৎসা নিতে হবে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী পূর্ণমেয়াদে ওষুধ খেতে হবে প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণের সঠিকভাবে চিকিৎসা না করালে পরবর্তীতে বন্ধ্যাত্ব হতে পারে জরায়ুর মুখে ক্যান্সার হতে পারে বা ছেলেদের ক্ষেত্রে মূত্রনালী সরু হয়ে যেতে পারে ধর্মীয় ও পারিবারিক অনুশাসন মেনে বিবাহ বর্হিভূত যৌনসম্পর্ক স্থাপন থেকে দূরে থাকতে হবে স্বামীস্ত্রী পরস্পরের কাছে বিশ্বস্ত থাকতে হবে • যৌনমিলনের সময় সঠিকভাবে কনডম ব্যবহার করতে হবে অপুষ্টিতে ভুগলে যে কোনো সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায় মাসিকের সময় অপরিষ্কার কাপড় ব্যবহার করলে বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকলে প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ হতে পারে প্রস্রাবের রাস্তা দিয়ে পুঁজ বের হওয়া পুরুষাঙ্গে (লিঙ্গে) ঘা বা ক্ষত হওয়া অণ্ডকোষ ফুলে যাওয়া ব্যথা হওয়া ঘন ঘন পস্রাব হওয়া প্রস্রাবে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা করা কুঁচকি ফুলে যাওয়া বা ব্যথা করা জ্বর হওয়া যোনিপথে দুর্গন্ধযুক্ত স্রাব যৌনাঙ্গে ক্ষতযাওয়া ও ব্যথা সহবাসের সময় ব্যথা জ্বর বা ঘা যোনিপথে চুলকানি ও জ্বালাপোড়া প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ বা যৌনরোগ হলে না লুকিয়ে চিকিৎসা নিতে হবে পুষ্টিকর ও সুষম খাবার খেতে হবে পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন থাকতে হবে প্রতিরোধে বিশেষ করে মাসিকের সময় স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে করণীয় • অন্যের ব্যবহার করা সুই বা সিরিঞ্জ ব্যবহার করা যাবে না • রক্তগ্রহণের আগে পরীক্ষা করে এইচআইভি মুক্ত ও অন্যান্য জীবাণুমুক্ত রক্ত গ্রহণ করতে হবে নারী ও পুরুষের প্রজনন বা বংশবৃদ্ধিতে শরীরের যেসব অঙ্গ কাজ করে সে অঙ্গগুলোকে প্রজনন অঙ্গ বলে এই প্রজনন অঙ্গগুলো যখন জীবাণু দ্বারা সংক্রমিত হয় তখন তাকে প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ বলে এ সংক্রমণের মধ্যে যৌনরোগও রয়েছে ■ শাকসবজি ও ফলমূল কাটার আগে নিরাপদ ও পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে ■ খাবারের পুষ্টিগুণ বজায় রাখতে অল্পতাপে ঢাকনা দিয়ে রান্না করতে হবে এবং রান্নার শেষ দিকে আয়োডিনযুক্ত লবণ যোগ করতে হবে ■ দিনে অন্ততপক্ষে ২ লিটার (৮ গ্লাস) নিরাপদ পানি পান করতে হবে ■ সপ্তাহে ২টি আয়রন ফলিক এসিড ট্যাবলেট ■ ৬ মাস অন্তর কৃমিনাশক ট্যাবলেট খেতে হবে ভাতের সাথে লেবু ও কাঁচা মরিচ খাওয়ার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে ■ স্বাস্থ্যসম্মত পায়খানা ব্যবহার করতে হবে এবং জুতা বা স্যান্ডেল পরে পায়খানায় যেতে হবে # খাবার তৈরি ও গ্রহণের আগে এবং শৌচকর্মের পরে পরিষ্কার পানি ও সাবান দিয়ে হাত ধুতে হবে শর্করা জাতীয় খাবার ভাত আটা বা ময়দার রুটি পাউরুটি আলু মিষ্টিআলু মুড়ি চিড়া খৈ চিনি মধু প্রভৃতি চর্বি জাতীয় খাবার তেল মাখন ঘি মাছমাংসের চর্বি প্রভৃতি আমিষ জাতীয় খাবার ডিম মাছ মাংস কলিজা ছোটমাছ দুধ সয়াবিন ও অন্যান্য ডাল বাদাম সিমের বিচি প্রভৃতি ভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবার (শাক সবজি ও ফল জাতীয় খাবার) কচুশাক পুঁইশাক কলমিশাক পালংশাক পাকা আম পাকা তাল পাকা পেঁপে পাকা কাঁঠাল আনারস পেয়ারা আমলকি আমড়া কলা লেবু গাজর মিষ্টিকুমড়া শিম ছোটমাছ দুধ ডিম কলিজা প্রভৃতি মানসিক বিকাশ ও শারীরিক বৃদ্ধির আগে অর্থাৎ অপরিণত বয়সে বিয়ে করলে মানসিক চাপ ও পরবর্তীতে সন্তানধারণের জন্য শারীরিক ধকলের মোকাবিলা করতে হয় যা কিশোরকিশোরীর মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার কারণ হয়ে থাকে ■ বাল্যবিয়ে হলে কিশোরকিশোরীরা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে না তাই ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না ■ বাল্যবিয়ের কারণে কিশোরীরা অল্প বয়সে সন্তানধারণ করে যার ফলে মেয়েরা প্রসবকালীন জটিলতাসহ দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন রোগে (জরায়ু বের হয়ে আসা ফিস্টুলা প্রস্রাব ঝরা ইত্যাদি) ভোগে এমনকি অকাল মৃত্যুর শিকার হয়ে থাকে ■ অপরিণত বয়সে বিয়ে হলে মা ও শিশুর মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায় ■ কিশোরী অবস্থায় শারীরিক এবং মানসিক পরিপক্বতা না থাকায় নিজের পরিবারের ও সন্তানের সঠিক যত্ন নিতে পারে না দেশের আইন অনুযায়ী বিয়ের জন্য মেয়েদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর এবং ছেলেদের ২১ বছর হতে হবে এর আগে বিয়ে হলে তাকে বাল্যবিয়ে বলে শিশুকাল থেকে যৌবনে পদার্পণের মাঝখানের সময় হলো বয়ঃসন্ধি বা কৈশোরকাল সাধারণত ১০১৯ বছর বয়সের ছেলেমেয়েদের কিশোরকিশোরী বলে এ সময়ে তারা বিভিন্ন শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যায় শরীরের মতো আমাদের মনেরও যত্নের প্রয়োজন মনের স্বাস্থ্যই মানসিক স্বাস্থ্য শরীরে কোনো রোগ না থাকলেও শারীরিক সুস্থতার জন্য প্রতিদিন দাঁত ব্রাশ করতে হয় গোসল করতে হয় সুষম খাবার খেতে হয় ব্যায়াম করতে হয় অস্বাস্থ্যকর খাদ্য আর অভ্যাস থেকে দূরে থাকতে হয় মনের সুস্থতার জন্যেও নিয়মিত মনের যত্ন নিতে হয় ■ নিয়মিত খেলাধুলা করা বইপড়া এবং সমবয়সীদের সাথে অবসর সময় কাটানো ■ পরিবারের সদস্য স্কুলের সহপাঠী বন্ধু ও শিক্ষকদের সাথে সহযোগিতাপূর্ণ আচরণ করা রাত না জেগে সঠিক সময়ে ঘুমাতে যাওয়া ও সকালে ঘুম থেকে উঠা এবং হালকা ব্যায়াম করা ■ দৈনন্দিন জীবনে রুটিন মেনে চলা ও কোনো সমস্যা দেখা দিলে বাবামা বা পরিবারের বয়োজ্যেষ্ঠদের পরামর্শ গ্রহণ করা ■ ধর্মীয় ও সামাজিক অনুশাসন এবং পারিবারিক মূল্যবোধ মেনে চলা মাদক গ্রহণ না করা দ্বন্দ্বকলহ প্রভৃতি এড়িয়ে চলা মেয়েদের প্রতিমাসে যোনিপথ দিয়ে যে রক্তস্রাব হয় তাকে ঋতুস্রাব বা মাসিক বলে ঋতুস্রাব সাধারণত ১০১৪ বছর বয়সের মধ্যে শুরু হয় এবং ৪৫৫০ বছর পর্যন্ত প্রতিমাসে ১ বার করে হতে থাকে প্রতিমাসেই ৩৭ দিন পর্যন্ত রক্তস্রাব হয়ে থাকে কৈশোরে হরমোনের প্রভাবে ছেলেদের প্রজনন অঙ্গে প্রতিনিয়ত বীর্য তৈরি হয় এবং তা জমা হতে থাকে এই বীর্য জমা হতে হতে স্বাভাবিকভাবেই ঘুমের মধ্যে উত্তেজনাকর স্বপ্ন দেখলে লিঙ্গ দিয়ে তা বের হয়ে আসে একে স্বপ্নবাস বা স্বপ্নদোষ বলে স্বপ্নবাস কৈশোরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া স্বপ্নবাস হলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই শরীর ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে মাদক থেকে দূরে থাকি জীবনটাকে সুস্থ রাখি শখ করেও কখনো মাদক সেবন নয় সন্তানের কথা শুনবো ওদের নিরাপদে রাখবো ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র •উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স • মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্ৰ • জেলা হাসপাতাল • স্কুল হেলথ ক্লিনিক • নির্দিষ্ট এনজিও ক্লিনিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই একসাথে কিশোরকিশোরীদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলি তাদের নিরাপদ রাখি কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য সমস্যার সমাধান ও পরামর্শ পেতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্ৰ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্ৰ জেলা হাসপাতাল স্কুল হেলথ ক্লিনিক নির্দিষ্ট এনজিও ক্লিনিক কৈশোরে অতিরিক্ত শক্তি এবং পুষ্টি যোগ করার জন্য আমিষ ভিটামিন খনিজ ও লবণসমৃদ্ধ খাবার খেতে উত্তরণ দেওয়া হয় বয়স এবং দৈনন্দিন কাজের পরিমাণ অনুযায়ী ক্যালরি গ্রহণ করা উচিত ক্যালরি গ্রহণে বয়স কম করে সে কম ক্যালরি এবং বয়স বেশি এবং কাজ বেশি করে সে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করতে পারে আমিষ ভিটামিন খনিজ এবং লবণ সহিত খাবারে মাংস মাছ ডেয়রি প্রোডাক্ট সবজি ফল এবং খনিজযুক্ত খাবার থাকতে পারে বয়সঃসন্ধিকালে শরীর দ্রুত বাড়ে এই সময়ে আমিষ ভিটামিন খনিজ এবং লবণসমৃদ্ধ খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন যা শরীরে পুষ্টি এবং শক্তি যোগ করে মানসিক স্বাস্থ্য হল এমন একটি অবস্থা যেখানে প্রত্যেক ব্যক্তি তার নিজের সম্ভাবনাকে উপলব্ধি করতে পারে জীবনের দৈনন্দিন চাপকে মোকাবেলা করতে পারে উৎপাদনশীলভাবে কাজ করতে পারে এবং তার সমাজে অবদান রাখতে সক্ষম হয় এটি এমন এক ধরণের সেবা যার দ্বারা মানুষ আত্মসচেতন হওয়ার মাধ্যমে নিজের আচরণ ও মনোভাবের কাঙ্খিত পরিবর্তন আনতে সক্ষম হয় কৈশোরকালীন সময়ে কিশোরকিশোরীদের মাঝে বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় পরিবার বন্ধু এবং সমবয়সীদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও নানা ধরণের ভিন্নতা প্রকাশ পায় কারণ প্রত্যেক কিশোর কিশোরীর মনোসামাজিক বিকাশ ভিন্ন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে জিনগত বৈশিষ্ট্য মস্তিষ্কের বিকাশ অভিজ্ঞতা ছাড়াও চারপাশের পরিবেশ (পরিবার বন্ধু সমাজ কৃষ্টি) ইত্যাদিও বিশেষভাবে প্রভাব বিস্তার করে মনোসামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে কিশোরকিশোরীদের মাঝে আত্মনির্ভরশীলতা এবং পরিণত বয়সের বৈশিষ্ট্যগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় আবেগ হলো এক ধরনের মানসিক অবস্থা যা চিন্তন অনুভূতি আচরণগত প্রতিক্রিয়া এবং আনন্দ/বেদনার মাত্রার সাথে সম্পর্কিত আবেগের ফলে আমাদের নানা রকম শারীরিক আচরণগত এবং চিন্তার পরিবর্তন হয় সুঃখ দুঃখ রাগ ভয় আত্ম সম্মানবোধ আবেগীয় সমস্যা (অত্যধিক রাগ নিরাপত্তাহীনতা উদ্বেগ চাপ হতাশা বিষন্নতা) প্রত্যাহার মূলক মনোভাব বিদ্রোহী আচরণ দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অনেক নেতিবাচক ঘটনার মধ্যে দিয়ে যেতে হয় ফলে আমরা নানা ধরনের আবেগীয় সংকটের সম্মূখীন হই বিভিন্ন পরিস্থিতিতে কি করতে হবে কিভাবে করতে হবে তা নিয়ে আমরা অনিশ্চয়তা ও দ্বিধায় ভূগি আবেগ ব্যবস্থাপনা ব্যক্তিকে আত্ম নিয়ন্ত্রনে সহায়তা করবে নেতিবাচক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে এবং এ ধরনের পরিস্থিতিতে কিভাবে প্রতিক্রিয়া করতে হবে তাতে সহায়তা করবে ব্যক্তি তার গুনাবলীগুলো উপলদ্ধি করতে পারবে এবং ফলপ্রসূভাবে কাজ করতে পারবে আত্মবিশ্বাস আত্মনিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা এবং আত্মসম্মানবোধ বৃদ্ধিতে সহায়তা করবে নিজের অনুভূতি প্রতিক্রিয়া এবং মানসিক অবস্থার প্রতি খেয়াল করা এবং বোঝা নিজের অনুভূতি ও আচরণের দায়িত্ব নেওয়া নিজের সফলতার উপর ফোকাস করা এবং এর জন্য নিজেকে প্রশংসা করা প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় অতিবাহিত করা মুক্ত মনা হওয়া ও চারপাশে যা ঘটছে তা গ্রহণ করা বিশ্বস্ত কারো সাথে মনের কথা শেয়ার করা পছন্দনীয় ইতিবাচক কাজ করা (পছন্দের বই পড়া গান শোনা) ডায়েরী লেখা (ঘটে যাওয়া ঘটনা নিজের চিন্তা ও অনুভূতি লেখা) জীবনের ইতিবাচক ঘটনার প্রতি ফোকাস করা ব্যায়াম করা নাক দিয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে প্রশ্বাস ছাড় আমেরিকান সাইকোলজিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের (APA) এর মতে উদ্বেগ হলো এক ধরনের আবেগ যাকে তীব্র অনুভূতি দুঃশ্চিন্তা এবং রক্তচাপ বৃদ্ধি করার মতো শারীরিক পরিবর্তনগুলো দ্বারা চিহ্নিত করা হয় স্বাভাবিক মাত্রায় উদ্বেগের অনুভূতি থাকা ভালো যেটা ব্যক্তিকে কোন বিপজ্জনক পরিস্থিতি মোকাবেলা করতে প্রস্তুত ও সহায়তা করে তবে উদ্বেগ বেশি মাত্রায় থাকলে ব্যক্তির জন্য ক্ষতিকর হয় ফলে ব্যক্তির স্বাভাবিক জীবন যাত্রার মান ব্যহত হয় এবং ব্যক্তির মানসিক অবস্থা হুমকির সম্মুখীন হয় অত্যধিক রাগ বিরক্ত বোধ মনোযোগের অসুবিধা অস্থিরতা যেকোন পরিস্থিতি খুব বিপজ্জনক মনে করা খারাপ কিছু ঘটবে বলে আশংকা নেতিবাচক চিন্তা হৃদস্পন্দন বেড়ে যাওয়া রক্ত চাপ বেড়ে যাওয়া বমি বমি ভাব ঘাম হওয়া মুখ শুকিয়ে যাওয়া ডায়রিয়া পেট ব্যাথা মাথা ব্যাথা শ্বাস কষ্ট শ্বাস কষ্ট ঘুম না হওয়া বা ঘুমের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া পরিস্থিতি এড়িয়ে চলা খাবারে অরুচি বা অত্যধিক পরিমাণে খাবার গ্রহণ করা অলসতা বা অনীহা মাদক দ্রব্য গ্রহণ করা/মদ্যপান করা প্রত্যাহারমূলক আচরণ চাহিদা ও যোগানের মধ্যে পার্থক্য থাকা অবাস্তব প্রত্যাশা আত্ম নিয়ন্ত্রণের অভাব প্রত্যাখ্যাত ও বিচ্ছিন্ন হওয়ার ভয় তুলনা করা কর্মক্ষেত্র ও স্কুলের কাজের চাপ ব্যক্তিগত ও পারিবারিক সম্পর্কের অবনতি অর্থনৈতিক সমস্যা অসুস্থতা নেতিবাচক অভিজ্ঞতা ইত্যাদি ১) নিজের চিন্তা অনুভূতি ও আচরণের প্রতি খেয়াল করা এবং এগুলোর দায়িত্ব গ্রহণ করা ২) বিশ্বস্ত কারো সাথে মনের কথা শেয়ার করা ৩) নিজেকে উদ্বেগজনক পরিস্থিতি থেকে কিছু সময়ের জন্য দূরে রাখা যেমন ১০১৫ মিনিট হাঁটা এক কাপ চা তৈরি করে খাওয়া গোসল করা ইত্যাদি ৪) নিজের সাথে ইতিবাচক কথা বলা ৫) যে পরিস্থিতি বা ঘটনা আমাদের নিয়ন্ত্রনের বাইরে তা মেনে নেওয়া ৬) পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো ৭) নিজের পছন্দের ইতিবাচক কাজ করা ৮) পুষ্টিকর খাবার খাওয়া ৯) ভালো স্মৃতি বা সফলতার কথা ভাবা ১০) নিজেকে পুরস্কৃত করা ও নিজের প্রশংসা করা ১১) দৃঢ়তার সাথে না বলতে শেখা ১২) ব্যায়াম করা ১৩) নাক দিয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে প্রশ্বাস ছাড়া ১৪) প্রয়োজনে মনোবিজ্ঞানীর শরণাপন্ন হওয়া ব্যক্তির চাহিদা এবং ক্ষমতার মধ্যে দ¦›দ্ব তৈরি হওয়ার ফলে ব্যক্তির নিজের মধ্যে যে পরিস্থিতির সৃষ্টি হয় তাকে মানসিক চাপ বলা হয় অর্থাৎ আমরা যে কাজটি যেভাবে করতে চাই তা যখন পরিবেশ ও পরিস্থিতির কারণে করতে পারি না তখন আমরা মানসিকভাবে চাপ অনুভব করে থাকি মানসিক চাপের ফলে শারীরিক আবেগীয় আচরণগত বিভিন্ন পরিবর্তন পরিলক্ষিত হয় নিম্নে কিছু পরিবর্তন উল্লেখ করা হল শারীরিক পরিবর্তনসমূহ আবেগীয় পরিবর্তনসমূহ আচরণগত পরিবর্তনসমূহ বুক ধরফর করা বিরক্ত বোধ রক্ত চাপ বেড়ে অত্যধিক রাগ ইনসমনিয়া বিষণ্ণতা ঘুম না হওয়া মাদক দ্রব্য গ্রহণ করা/মদ্যপান করা অমনোযোগীতা মাথাব্যথা উত্তেজনা অলসতা বা অনীহা অকারণে হাঁটাহাঁটি বুকে ব্যথা হতাশা করা শ্বাস কষ্ট কষ্ট চিৎকার চেঁচামেচি করা বমি বমি ভাব আত্মবিশ্বাসের অভাব কান্নাকাটি করা ডায়রিয়া পেট ব্যথা অপরাধবোধ অস্থিরতা খাবারে অরুচি বা পরিমাণে খাবার গ্রহণ করা ভুলে যাওয়া দোষারোপ করা ঘাম হওয়া বাইরে হাঁটতে যাওয়া বিশ্বস্ত বন্ধু এবং পরিবারের সদস্যদের সাথে সুন্দর সময় অতিবাহিত করা বিশ্বস্ত কারো সাথে মনের কথা শেয়ার করা পছন্দের বই পড়া গান শোনা ডায়েরী লেখা ব্যায়াম করা আয়নায় নিজেকে দেখা হাতমুখ ধৌত করা বা গোসল করা প্রার্থনা করা পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমানো প্রাকৃতিক পরিবেশে সময় অতিবাহিত করা নাক দিয়ে গভীর নিঃশ্বাস নিয়ে মুখ দিয়ে প্রশ্বাস ছাড়া রাগ হচ্ছে এক ধরনের মৌলিক অনুভূতি যার উৎপত্তি ঘটে কষ্ট হতাশাবিরক্তি আশাহত হওয়া ইত্যাদি থেকে রাগ প্রকাশের মাত্রা বিভিন্ন ধরনের হতে পারে সামান্য বিরক্তি প্রকাশমূলক শব্দ থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধ্বংসাত্মক কার্যাবলী সম্পাদনের মাধ্যমে রাগের বহিঃপ্রকাশ ঘটতে পারে নিষ্ক্রিয় আচরণের ফলে সামাজিক সমর্থনের অভাব আবেগীয় বিশৃঙ্খলা বিষন্নতা উদ্বেগ ইত্যাদি মানসিক আঘাতজনিত ঘটনা মানসিক চাপ আঘাত/ অপমান করে কথা বললে হুমকির সম্মুখীন হলে নিজের লক্ষ্যে পৌঁছতে বাধাগ্রস্ত হয়ে হতাশ হওয়ার ফলে অসম্মানিত হওয়ার ফলে অধিকার খর্ব হলে ইত্যাদি শারীরিক ক্ষতি মানসিক ক্ষতি পেশাগত ক্ষতি পড়ালেখার ক্ষতি সম্পর্কের ক্ষতি বিষন্নতায় ভোগা ভবিষ্যত নিয়ে দুশ্চিন্তা করা ঘুমের সমস্যা নেশায় জড়িয়ে পরা একই কাজ বারবার করার প্রবনতা নিজের ক্ষতি করা রক্তচাপ বেড়ে যাওয়া ইত্যাদি ১) প্রতিক্রিয়া প্রকাশের আগে কিছুটা সময় নেয়া ২) ১১০ পর্যন্ত ধীরে ধীরে গুণতে থাকা ৩) কোন প্রকার ক্ষতিকারক আচরণ এবং অন্যকে অসম্মানজনক আচরণ প্রদর্শন না করে নিজের চিন্তা ও অনুভূতিকে নানাভাবে প্রকাশ করা ৪) পর্যাপ্ত ঘুম ৫) ডায়েরী লেখা ৬) শরীর চর্চা বা ব্যায়াম করা ৭) নিঃশ্বাসের ব্যায়াম করা ৮) পরিস্থিতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া ৯) মনোচিকিৎসকের শরণাপন্ন হওয়া পুষ্টি হলো একটি প্রক্রিয়া এ প্রক্রিয়াতে খাদ্যবস্তু খাওয়ার পরে পরিপাক হয় এবং জটিল খাদ্য উপাদানগুলো ভেঙ্গে সরল উপাদানে পরিণত হয় মানবদেহ এসব সরল উপাদান শোষণ করে নেয় এসব খাদ্য উপাদান মানবদেহের শক্তি ও যথাযথ বৃদ্ধি নিশ্চিত করে মেধা ও বুদ্ধি বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ করে রোগব্যাধি থেকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে সাহায্য করে এবং সর্বোপরি কর্মক্ষম করে যেসব খাদ্য খেলে শরীরে তাপ ও শক্তি উৎপাদিত হয় দেহের গঠন ও বৃদ্ধি হয় শরীর সবল কর্মক্ষম থাকে তাকে পুষ্টিকর খাদ্য বলে খাদ্য ও পুষ্টি একে অপরের সাথে জড়িত প্রতিটি খাদ্য অবশ্যই পুষ্টিকর ও নিরাপদ হতে হবে নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করলে শরীর ও মন ভালো থাকে মনে প্রফুল্লতা আসে এবং পড়াশোনা ও কাজে মনোযোগ বাড়ে মনে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ না করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সংজ্ঞা অনুযায়ী ১০১৯ বছর বয়স সীমাকে কৈশোরকাল (adolescence) বলে এ সময় ছেলেমেয়ে উভয়েরই স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয় দ্রুত ওজন ও উচ্চতার বৃদ্ধি এবং বুদ্ধির বিকাশ ঘটে তাই কিশোরকিশোরীদের সঠিক বৃদ্ধির জন্য এসময় পরিমাণমতো পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি নিয়ে বেড়ে উঠলে কিশোরকিশোরীদের মেধা ও বুদ্ধির বিকাশ হয় লেখাপড়ায় মনোযোগ ভালো ফলাফল এবং কাজ করার সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় মানবদেহকে সুস্থসবল রাখার জন্য খাদ্য অপরিহার্য খাদ্য বলতে সেই সকল জৈব উপাদানকে বোঝায় যেগুলো মানবদেহ গঠনে ভূমিকা রাখে ক্ষয়পূরণ করে শক্তি বৃদ্ধিসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে মানুষ খাদ্য থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে ওজন ও উচ্চতা পরিমাপক যন্ত্র সমতল ও সুবিধাজনক জায়গায় সেট করতে হবে ওজন পরিমাপের সময় যথাসম্ভব স্বল্প কাপড় পরিধান করতে হবে এবং উচ্চতা পরিমাপের সময় জুতা/স্যান্ডেল খুলে কাঁধ সোজা রেখে সামনের দিকে তাকিয়ে উচ্চতা পরিমাপ করতে হবে তাপ ও শক্তি উৎপাদনকারী খাদ্য (শর্করা জাতীয় খাবার ভাত রুটি চিড়া মুড়ি আলু মিষ্টি আলু) সকালের খাবারঃ মাঝারি সাইজের ২/৩টি রুটি অথবা ২টি পরোটা অথবা ১ বাটি ভাত বাড়িতে তৈরি নাস্তা জাতীয় খাবার (চিড়া/মুড়ি গুড়) ও পাকা কলা মধ্যসকালের নাস্তা দুপুরের খাবারঃ ২/৩ বাটি ভাত বিকালের নাস্তা রাতের খাবারঃ ২/৩ বাটি ভাত শরীরের ক্ষয়পূরণ ও বৃদ্ধিকারক খাদ্য (আমিষ জাতীয় খাবার ডিম মাছ মাংস দুধ ডাল ও বিচি জাতীয় খাবার) ১টি ডিম অথবা ১ বাটি ডাল ১ বাটি মাঝারি ঘন ডাল ও ১ টুকরা (মাঝারি সাইজের) মাছ/মাংস/কলিজা ১ গ্লাস দুধ অথবা দুধ দিয়ে তৈরি ঘন যেকোনো খাবার (ফিরনি/সেমাই/ পায়েস/ পিঠা/দই ইত্যাদি) ১ বাটি ঘন ডাল (যদি সম্ভব হয় ১ টুকরা মাছ/ মাংস) রোগ প্রতিরোধকারী খাদ্য (ভিটামিন ও খনিজ | উপাদান সমৃদ্ধ খাবার রঙ্গিন শাক অথবা সবজি দেশি মৌসুমী ফল) ১ বাটি সবজি (২/৩ রকম সবজি মিশিয়ে) অথবা সবজি ভাজি (পটল ভাজি পেঁপে ভাজি ইত্যাদি) যেকোনো দেশি মৌসুমী ফল (আম কাঁঠাল পেঁপে আনারস ইত্যাদি) ঋতুভেদে যেসব ফল সহজেই আমরা পাই ১ বাটি শাক (লাল শাক কচু শাক পুঁই শাক) অথবা সবজি যেকোনো দেশী মৌসুমী ফল ঋতুভেদে যেসব ফল সহজেই আমরা পাই সুষম খাবার যেমন শর্করাজাতীয় খাবার (ভাত রুটি মুড়ি চিনি গুড় মধু আলু চিড়া ইত্যাদি) আমিষজাতীয় খাবার (ডিম দুধ মাছ মাংস ডাল বাদাম বিচি ইত্যাদি) আয়রনসমৃদ্ধ খাবার (মাংস কলিজা এবং গাঢ় সবুজ শাকসবজি) ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার (কলিজা পাকা পেঁপে আম গাজর মিষ্টি কুমড়া ছোট মাছ ডিম সবুজ শাকসবজি ও হলুদ রঙের ফলমূল) খাওয়া প্রতিদিন ভিটামিন সিযুক্ত খাবার খাওয়া আয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার (সামুদ্রিক মাছ এবং সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার শাকসবজি) এবং আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়া প্রতিদিন ১০১২ গ্লাস পানি পান করা চিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী কিশোরীদের আয়রনফলিক অ্যাসিড (IFA) ট্যাবলেট খাওয়া (প্রতি সপ্তাহে ১টি করে খাবে) প্রত্যেক কিশোরকিশোরীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছয়মাস পর পর কৃমিনাশক বড়ি গ্রহণ করা খাবার খাওয়ার আগে ও পরে সাবান এবং নিরাপদ পানি দিয়ে হাত ধোয়া স্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করা এবং জুতা বা স্যান্ডেল পরে টয়লেটে যাওয়া মাসিকের সময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন থাকা মনে রাখতে হবে যে এ সময় সব ধরনের খাবার খাওয়া যায় এবং সব স্বাভাবিক কাজকর্ম করা যায় দেরিতে বিয়ে ও দেরিতে গর্ভধারণ করা (১৮ বছরের পরে) কিশোরীকে টিডি (টিটেনাসডিপথেরিয়া) টিকার ৫টি ডোজ সম্পূর্ণ করা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে (১৯৪৮) স্বাস্থ্য শুধুমাত্র রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতিই নয় বরং এমন একটি অবস্থা যেখানে পরিপূর্ণ শারীরিক মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতা বিদ্যমান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী ১০১৯ বছর হচ্ছে কৈশোরকাল শৈশব ও যৌবনের সন্ধিক্ষণে দ্রুত ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সময়কালই কৈশোর হিসেবে ধরা হয় এটি জীবনের এমন একটি সময় যখন মানুষ শিশু বা বয়স্ক কোনটাই নয় কৈশোরকালে মানুষের জীবনে অনেক রকম শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয় এছাড়াও কৈশোরকালে সামাজিক প্রত্যাশা ও ধারণা পরিবর্তিত হয় এই সময়ে সূক্ষ্ম ও বিমূর্ত বিষয় নিয়ে চিন্তা করার ক্ষমতা ও আত্মসচেতনতা তৈরি হয় এবং সমাজ তার কাছে মানসিক পরিপক্কতা আশা করে জীবনের অন্য সময়ের চেয়ে কৈশোরে সবচেয়ে বেশি মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন হয়ে থাকে এ পরিবর্তনগুলো হলো প্রজননতন্ত্রের বৃদ্ধি যৌন বৈশিষ্ট্য ও আচরণের প্রকাশ এবং পরিপক্কতা পূর্ণ মানুষ হিসেবে স্বকীয়তা ও পরিচিতি এবং মানসিক ও আর্থসামাজিক পরনির্ভরতা থেকে কিছুটা আত্মনির্ভরতা কৈশোরকালীন সময়ে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি হয় এই সময়ে তাদের শরীরের আকৃতি ও শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং তারা প্রজননক্ষম হয় তাদের চিন্তার বিকাশ ঘটে এবং পরিবারের বাইরে বন্ধুবান্ধব ও অন্যান্যদের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করে সেই সাথে নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জিত হয় এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয় কিশোরদের শারীরিক পরিবর্তনঃ উচ্চতা ও ওজন বাড়ে বুক ও কাঁধ চওড়া হয় হালকা গোঁফের রেখা দেখা দেয় গলার স্বর ভেঙে যায় ও ভারি হয় অন্ডকোষ ও লিঙ্গের আকার বৃদ্ধি পায় লিঙ্গের চারপাশ ও বগলে লোম গজায় কখনো কখনো ঘুমের মধ্যে বীর্যপাত হয় চামড়া তৈলাক্ত হয় কিশোরদের মানসিক পরিবর্তনঃ মনে নানা প্রশ্ন ও কৌতুহল জাগে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে লাজুক ভাব দেখা দেয় ও সংকোচ বোধ করে নিজের প্রতি অন্যের বেশি মনোযোগ দাবী করে আবেগপ্রবণ হয় এবং স্নেহভালোবাসা পেতে চায় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গ এবং তাদের প্রতি নির্ভরতা বাড়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে চায় বড়দের মতো আচরণ করতে চায় ভাবুক ও কল্পনাপ্রবণ হয় কিশোরীদের শারীরিক পরিবর্তনঃ উচ্চতা ও ওজন বাড়ে স্তনের আকার বড় হয় গলার স্বর পরিবর্তন হয় মাসিক শুরু হয় উরু ও নিতম্ব ভারী হয় যোনি অঞ্চলে ও বগলে লোম গজায় জরায়ু ও ডিম্বাশয় বড় হয় চামড়া তৈলাক্ত হয় কিশোরীদের মানসিক পরিবর্তনঃ মনে নানা প্রশ্ন ও কৌতুহল জাগে বিপরীত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ বোধ করে লাজুক ভাব দেখা দেয় ও সংকোচ বোধ করে নিজের প্রতি অন্যের বেশি মনোযোগ দাবী করে আবেগপ্রবণ হয় এবং স্নেহভালোবাসা পেতে চায় বন্ধুবান্ধবের সঙ্গ এবং তাদের প্রতি নির্ভরতা বাড়ে স্বাধীনভাবে চলাফেরা করতে চায় বড়দের মতো আচরণ করতে চায় ভাবুক ও কল্পনাপ্রবণ হয় নারী প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন অঙ্গ হচ্ছে ডিম্বাশয় ডিম্ববাহী নালী বা ফ্যালোপিয়ান টিউব জরায়ু জরায়ুরমুখ (সার্ভিক্স) যোনিপথ বা সন্তান হবার রাস্তা পুরুষ প্রজননতন্ত্রের বিভিন্ন অঙ্গ হচ্ছে অণ্ডকোষ পুরুষাঙ্গ বা লিঙ্গ অন্ডকোষের থলি শুক্রবাহী নালী বীর্যথলি মূত্রনালী মাসিক একটি স্বাভাবিক প্রাকৃতিক প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে একজন নারী গর্ভধারণ/সন্তান জন্মদানের জন্য প্রস্তুত হয় প্রতিমাসে যোনিপথ দিয়ে মেয়েদের যে রক্তস্রাব হয় তাকে মাসিক/ ঋতুস্রাব বলে ঋতুস্রাব সাধারণত ৯১৪ বৎসর বয়সের মধ্যে শুরু হয় এবং ৪৫৫৫ বৎসর পর্যন্ত প্রতিমাসে একবার করে হতে থাকে প্রতিমাসেই ১৭ দিন পর্যন্ত রক্তস্রাব হয়ে থাকে প্রথম ১৩ দিন একটু বেশি পরিমাণ রক্ত গেলেও পরবর্তী দিনগুলোতে রক্তস্রাবের পরিমাণ কমে আসে বয়ঃসন্ধির সময় থেকে মাসিক শুরু হয় জরায়ুর ভেতরের আবরণের সবচেয়ে বাইরের আবরণটি হরমোনের প্রভাবে প্রতিমাসে বিচ্ছিন্ন হয় তখন এর নিচে ছোট ছোট রক্তনালীগুলো উন্মুক্ত হয়ে পড়ে এবং রক্তপাত হয় এই রক্ত ও জরায়ুর বাইরের আবরণের ছেঁড়া ছেঁড়া অংশ যোনিপথ দিয়ে বের হয়ে আসে সাধারণত প্রতিমাসে ২১৩৫ দিন অন্তর অন্তর যোনিপথে এই রক্তক্ষরণ হয়ে থাকে এবং তা ১৭ দিন পর্যন্ত হতে পারে এ সময় যদি অস্বাভাবিক ব্যথা বা অস্বস্তিকর কিছু না ঘটে তবে সে তার স্বাভাবিক কাজকর্ম চালিয়ে যেতে পারে মাসিককালীন সময়ে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার প্রচুর পরিমাণে খাওয়া প্রয়োজন কারণ তাদের দেহ থেকে প্রতিমাসে রক্তক্ষরণ হয় এ ঘাটতি পূরণের জন্য আমিষ (ডাল সিমের বীচি বাদাম দুধ এবং দুধজাতীয় খাদ্য ডিম মাছ মাংস ইত্যাদি) আয়রন (গাঢ় সবুজ শাকসবজি ও ফল কলিজা ইত্যাদি) ক্যালসিয়াম (দুধ ও দুধজাতীয় খাদ্য ছোটমাছ ইত্যাদি) ভিটামিন সি (লেবু আমলকি পেয়ারা ইত্যাদি) খেতে হবে প্রতিদিন ভালোভাবে গোসল এবং প্রজনন অঙ্গ পানি ও সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে মাসিকের সময় ঘরে তৈরি পরিষ্কার ন্যাপকিন/কাপড় অথবা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে কাপড় ব্যবহার করলে ব্যবহারের পর কাপড়টি সাবান ও পানি দিয়ে ধুতে হবে এবং সূর্যের আলোতে শুকিয়ে নিয়ে পরিষ্কার প্যাকেটে পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য রেখে দিতে হবে রক্তস্রাবের পরিমাণ অনুযায়ী স্যানিটারি ন্যাপকিন বা কাপড় দিনে অন্ততপক্ষে ৪ থেকে ৬ বার বদলাতে হবে একটি প্যাড একবারই ব্যবহার করতে হবে এবং ব্যবহারের পর তা কাগজে মুড়িয়ে ডাস্টবিনে/ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে/গর্তে ফেলতে হবে মাসিকের সময় স্বাভাবিক হাঁটাচলা ও হালকা ব্যায়াম করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে কৌষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর পানি শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে মাসিক বন্ধ থাকলে একমাসে ২/৩ বার মাসিক হলে প্রচুর রক্তক্ষরণ বা প্রচন্ড ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে ছেলেদের সাধারণত বয়ঃসন্ধির সময় বা ১৩ থেকে ১৫ বছর বয়স থেকে বীর্যথলিতে বীর্য তৈরি শুরু হয় অতিরিক্ত বীর্য স্বাভাবিক নিয়মে শরীর থেকে বেরিয়ে আসে এটাই হচ্ছে বীর্যপাত ঘুমের মধ্যে এই বীর্য বেরিয়ে আসাকে বলা হয় স্বপ্নে বীর্যপাত যা সাধারণত স্বপ্নদোষ হিসেবে পরিচিত স্বপ্নে বীর্যপাত ছেলেদের জন্য একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া এটি কোনো রোগ নয় কারো স্বপ্নদোষ না হওয়াও কোনো অস্বাভাবিক ব্যাপার নয় এবং এর অর্থ এই নয় যে তার বীর্য ঠিকমতো তৈরি হচ্ছে না এজন্য জীবন নষ্ট হয়ে গেছে ভেবে মন খারাপ করা কিংবা চিকিৎসার জন্য কবিরাজ/হাতুড়ে ডাক্তারের শরণাপন্ন হওয়া উচিত নয় যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে একজন থেকে অন্যজনের মধ্যে যেসব সংক্রমণ ছড়ায় সেগুলোই যৌনবাহিত সংক্রমণ যৌন সম্পর্ক (যৌনবাহিত সংক্রমন) ছাড়াও সংক্রমিত রক্ত/ রক্তজাত দ্রব্যাদি গ্রহন সংক্রমিত সূঁচ/যন্ত্রপাতি ও আক্রান্ত মায়ের বুকের দুধের মাধ্যমে প্রজননতন্ত্রের সংক্রমন হতে পারে প্রজনন অঙ্গসমূহে সংক্রমনকে প্রজননতন্ত্রের সংক্রমন বলে সকল যৌনবাহিত সংক্রমনই প্রজননতন্ত্রের সংক্রমনের আওতায় পড়ে ব্যক্তিগত অপরিচ্ছন্নতা প্রজননতন্ত্রের জীবাণুগুলোর অতিবৃদ্ধি অনিরাপদ যৌনমিলন জীবাণুযুক্ত পরিবেশ সংক্রমিত রক্তগ্রহণ সংক্রমিত মায়ের গর্ভধারণ যৌনাঙ্গে চুলকানি হওয়া যৌনাঙ্গ থেকে দুর্গন্ধযুক্ত বা দুর্গন্ধবিহীন স্রাব যাওয়া যৌনাঙ্গ থেকে পুঁজ বা পুঁজের মতো যাওয়া ও বার বার প্রস্রাব হওয়া যৌনাঙ্গে ক্ষত হওয়া যৌনমিলনে ব্যাথা হওয়া শরীরে চুলকানি বা ঘামাচির মত দানা হওয়া শরীরে লসিকা গ্রন্থি (কুঁচকি বা অন্যান্য স্থানে গুটি হওয়া) অধিকাংশ ক্ষেত্রেই যৌনরোগের লক্ষণ বোঝা যায় না বিশেষ করে ছেলেদের তুলনায় মেয়েদের এই লক্ষণগুলো অপ্রকাশিত থাকে তাই চিকিৎসা নিতে তারা অনেক দেরি করে ফেলে যা থেকে জটিলতাও হতে পারে ১) এইচআইভি সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায় ২) হিউম্যান প্যাপিলমা ভাইরাসে (এইচপিভি) আক্রান্ত নারীদের জরায়ুর মুখে ক্যান্সার হবার সম্ভাবনা থাকে ৩) সংক্রমিত নারী বা পুরুষের পরবর্তীতে স্থায়ী বন্ধ্যাত্ব হতে পারে ৪) মস্তিষ্ক যকৃত বা হৃৎপিন্ডে জটিলতা দেখা দিতে পারে ৫) সংক্রমিত পুরুষের মূত্রনালী সরু হয়ে যেতে পারে ৬) আক্রান্ত মায়ের গর্ভপাত হতে পারে বা মৃত সন্তান প্রসব করতে পারে ৭) আক্রান্ত মায়ের জরায়ুর পরিবর্তে ডিম্বনালীতে ভ্রুন বড় হতে পারে ৮) আক্রান্ত মায়ের শিশু জন্মগত ত্রুটি নিয়ে বা চোখে ইনফেকশন নিয়ে জন্ম নিতে পারে যা থেকে পরবর্তীতে অন্ধত্বও হতে পারে চারটি উপায়ে এইচআইভি ভাইরাস শরীরে প্রবেশ করতে পারে এগুলো হলো এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির সাথে অনিরাপদ যৌন সম্পর্কের মাধ্যমে এইচআইভি সংক্রমিত ব্যক্তির রক্ত ও রক্তজাত সামগ্রী শরীরে প্রবেশ করলে সংক্রমিত সুচ বা অশোধিত সার্জিক্যাল যন্ত্রপাতির মাধ্যমে এইচআইভি আক্রান্ত মা থেকে শিশুর শরীরে একটি দম্পতি তার আয়ের সাথে ও পারিপার্শ্বিক আর্থসামাজিক অবস্থার সাথে সঙ্গতি রেখে কখন ও কয়টি সন্তান গ্রহণ করবে দুটি সন্তানের মাঝে বিরতি কতদিনের হবে বা তার পরিবার কত ছোট বা বড় হবে তা ঠিক করা এবং সে লক্ষ্য অর্জনের জন্য যথাযথ ব্যবস্থা অবলম্বন করাই হলো পরিবার পরিকল্পনা কিশোরীবয়সে সে শারীরিক ও মানসিকভাবে সন্তানধারণের জন্য উপযুক্ত থাকে না এ সময়ে গর্ভধারণ মা ও সন্তান উভয়ের জন্যই অনেক ঝুঁকিপূর্ণ প্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়েও অনেক প্রয়োজনীয় তথ্য তারা জানেনা তাই এ সময়ে যে কারণে পরিবার পরিকল্পনা জানা উচিত তা হলো পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিসমূহ সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা অনাকাতি গর্ভধারণ থেকে নিজেকে রক্ষা করা অল্পবয়সে বিয়ে হলেও প্রথম সন্তানের জন্ম বিলম্বিত করা প্রথম সন্তান হয়ে গেলেও পরবর্তী সন্তানের মাঝে বিরতি দেয়া পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতিসমূহ কোথায় পাওয়া যায় তা জানা জরুরি গর্ভনিরোধক সম্পর্কে সঠিক তথ্য জানা পরিবার পরিকল্পনা আধুনিক পদ্ধতিসমূহ বাংলাদেশের পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রম অনুযায়ী যেকোনো সক্ষম দম্পতি আধুনিক পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ করতে পারেন যে পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণ করা হবে সেই পদ্ধতি সেবাগ্রহীতার জন্য উপযুক্ত কিনা তা যাচাই করে গ্রহণ করা উচিত সাধারণত সেবাদানকারী পদ্ধতি গ্রহণের সময় এ বিষয়ে আলোচনা করবেন বাংলাদেশে পরিবার পরিকল্পনা কার্যক্রমে বৈবাহিক অবস্থা এবং সন্তান সংখ্যা বিবেচনা করে পদ্ধতি দেয়া হয় স্থায়ী মহিলা স্থায়ী পদ্ধতি বা টিউবেকটমি পুরুষ স্থায়ী পদ্ধতি বা এনএসভি অস্থায়ী স্বল্পমেয়াদি দীর্ঘমেয়াদি খাবার বড়ি কনডম ইনজেকশন ইমপ্ল্যান্ট আইইউডি পদ্ধতিসমূহ ব্যবহার ও প্রয়োগ মেয়াদকাল খাবার বড়ি প্রতিদিন খেতে হয় প্রতিদিন কনডম প্রতিবার সহবাসের সময় ব্যবহার করতে হয় ব্যবহারের সময় ইনজেকশন গভীর মাংসপেশীতে দিতে হয় তিনমাস ইমপ্ল্যান্ট চামড়ার নিচে স্থাপন করা হয় প্রকারভেদে ৩ বছর বা ৫ বছর আইইউডি জরায়ুতে প্রয়োগ করা হয় ১০ বছর ভ্যাসেকটমি/ এনএসভি অন্ডথলির চামড়াতে ছোট অপারেশনের মাধ্যমে করা হয় স্থায়ী টিউবেকটমি তলপেটে ছোট অপারেশনের মাধ্যমে করা হয় স্থায়ী কমিউনিটি ক্লিনিক ও স্যাটেলাইট ক্লিনিক স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্র ও সদর হাসপাতাল মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এনজিও এবং বেসরকারি স্বাস্থ্যকেন্দ্র ওষুধের দোকান বাংলাদেশের আইনে বিবাহযোগ্য বয়স মেয়েদের জন্য কমপক্ষে ১৮ ও ছেলেদের ২১ বছর এর নিচে হলে তা বাল্যবিবাহ ১) দরিদ্রতা ২) কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার দায়মুক্ত হওয়া ৩) সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা ৪) শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব ৫) মেয়েশিশুর প্রতি অবহেলা বা তাকে বোঝা মনে করা ৬) স্কুল থেকে ঝরে পড়া ৭) বিবাহ আইন সম্পর্কে ধারণা কম থাকা ৮) বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া ৯) প্রচলিত সামাজিক প্রথা ও কুসংস্কার এবং ১০) জেন্ডার বৈষম্য বাল্যবিবাহ কিশোরীর জীবনে চরম বিপদ ডেকে আনে কারণ বিয়ের পরপরই কিশোরী গর্ভধারণ করে যা তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এসময় কিশোরীর নিজেরই শারীরিক বৃদ্ধি অসম্পূর্ণ থাকে যা গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত নয় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে যা করা উচিত ছেলেমেয়ে সকলের জন্ম নিবন্ধন করা বিয়ে পড়ানোর সময় কাজি যেন অবশ্যই জন্মসনদ দেখে বিয়ে পড়ান সে ব্যাপারে কাজিকে সচেতন করা বাল্যবিবাহের আইন সম্পর্কে কাজি অভিভাবক ও জনসাধারণকে সচেতন করা বাল্যবিবাহ ও এর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করা বাল্যবিবাহ হলেও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার ও দেরিতে সন্তান গ্রহণে কিশোরকিশোরী ও অভিভাবকদের সচেতন করা কিশোরকিশোরীদের জন্য উপযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করা বাল্যবিবাহ নিয়ে কমিউনিটি পর্যায়ে আলোচনা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করা বাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ ও বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালাএর বাস্তব প্রয়োগে সংশ্লিষ্টদের সঠিক দায়িত্ব পালন কৈশোরে গর্ভধারণ অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ কারণ এ সময় কিশোরীর নিজেরই শারীরিক বৃদ্ধি অসম্পূর্ণ থাকে তাই তার পুষ্টিসহ শারীরিক বৃদ্ধি ও মানসিক বিকাশ তখনও চলতে থাকে এ অবস্থায় গর্ভধারণ করলে কিশোরী মা ও শিশু উভয়ই ঝুঁকির মধ্যে পড়ে যায় গর্ভাবস্থায় কিশোরীর সাথে সাথে তার মধ্যে বেড়ে ওঠা সন্তানেরও নানা প্রকার পুষ্টিরদরকার হয় অথচ এ সকল সেবা এবং পুষ্টি কিশোরীর জন্য সবসময় পাওয়া সচরাচর সম্ভব নয় কৈশোরে সন্তান ধারণ এবং জন্মদানের ক্ষেত্রে মা এবং সন্তান উভয়ে কি ধরনের ঝুঁকিতে থাকতে পারে তা নিচে উল্লেখ করা হলোু গর্ভজনিত উচ্চ রক্তচাপ গর্ভকালীন রক্তস্বল্পতা প্রিএকলাম্পশিয়া বাধাগ্রস্থ প্রসব মৃত সন্তান প্রসব সময়ের আগে সন্তান জন্মদান কম ওজনের সন্তান জন্ম দেয়া প্রসব পরবর্তী বিষন্নতা অপর্যাপ্ত শিশু পরিচর্যা ও বুকের দুধ জেন্ডার হচ্ছে সমাজকর্তৃক নির্ধারিত নারী ও পুরুষের সামাজিক পরিচয় তাদের মধ্যকার বৈশিষ্ট্য এবং নারী ও পুরুষের ভূমিকা যা পরিবর্তনীয় এবং সমাজ সংস্কৃতি ইত্যাদি ভেদে ভিন্ন অতএব জেন্ডার সামাজিকভাবে নির্মিত একটি বিষয় যা পরিবর্তনশীল সেক্স বা লিঙ্গ হচ্ছে প্রাকৃতিক বা জৈবিক কারণে সৃষ্ট নারীপুরুষের বৈশিষ্ট্যসূচক ভিন্নতা বা শারীরিক বৈশিষ্ট্যের ভিত্তিতে নারী পুরুষের স্বাতন্ত্র্য কিংবা নারী পুরুষের শারীরিক বৈশিষ্ট্য যা পরিবর্তনযোগ্য নয় জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা হলো মেয়েশিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের বিরুদ্ধে সংঘটিত আচার আচরণ যা ব্যক্তির স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে পারিবারিক সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন আইনগত বিধান দ্বারা আরোপিত ব্যবস্থায় সর্বক্ষেত্রে শুধুমাত্র নারী বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করার কারণে যেভাবে অর্থনেতিক সামাজিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন আক্রমণ হুমকি ও আঘাতের শিকার হয় তাই জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা ১) শারীরিক নির্যাতন ২) মানসিক নির্যাতন ৩) যৌন নির্যাতন ৪) আর্থিক ক্ষতি ৫) যৌন হয়রানি কিশোরকিশোরীদের প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন রূপ দৈহিক সহিংসতা যৌন সহিংসতা মানসিক সহিংসতা অর্থনৈতিক সহিংসতা সাইবার ক্রাইম বুলিং বাল্যবিবাহ পাচার যৌন হয়রানি/ইভটিজিং এসিড নিক্ষেপ পর্নোগ্রাফি ও অশ্লীল প্রকাশনা পতিতাবৃত্তি শিশুশ্রম বুলিং বলতে কাউকে মানসিক বা শারীরিকভাবে হেনস্তা করা বোঝায় কাউকে অপমান অপদস্ত করা কারো সামনে কাউকে হেয় করা এগুলোই বুলিং অনেক সময় কাউকে অপদস্ত করাকে অনেকে মজা হিসেবে দেখে কিন্তু যে ব্যক্তির সাথে মজা করা হয় তিনি বুলিং এর শিকার হন উদাহরণ স্বরূপ কারো গায়ের রং শরীরের গঠন উচ্চতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মজা করা কাউকে আপত্তিকর ভাষায় ডাকা ইত্যাদি সাইবার বুলিং/সাইবার হয়রানী বলতে বোঝায় কাউকে ইলেকট্রনিক মাধ্যমের সহায়তায় বুলিং করা এটাকে আজকাল অনলাইন বুলিংও বলা হয় কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যে আজকাল এই সমস্যাটা খুব বাড়ছে এটা হতে পারে মিথ্যা প্রচারনামূলক হুমকি যৌন হয়রানী করা যার পেছনের উদ্দেশ্য থাকে কারো ক্ষতি করা ১) ফেসবুক ২) হোয়াটস্ অ্যাপস ৩) ইমো ৪) ভাইবার ৫) ম্যাসেন্জার ইত্যাদি ১) হতাশা ২) উদ্বেগ ৩) ঘুম ও খাদ্যাভাসে পরিবর্তন ৪) নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কথা বলা ৫) অন্যদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিনড়ব করে রাখা ৬) আত্মহত্যার ঝুঁকি ১) অপরিচিত কারও সাথে অনলাইনে বন্ধুত্ব বা অন্য কোন সুসম্পর্কে না জড়ানো ২) অপরিচিত কারও সাথে অনলাইনে কোন ধরণের ব্যক্তিগত মেসেজ দেয়া থেকে বিরত থাকা ৩) বিরক্তিকর ব্যক্তিকে ব্লক করে দেওয়া ৪) সাইবার বুলিং নিয়ে বিশ্বস্ত কাউকে জানানো ৫) অন্যান্য শিক্ষার্থী শিক্ষকশিক্ষিকা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং সাইবার বুলিং প্রতিরোধে নিয়মনীতি প্রণয়ন করা ৬) সাইবার বুলিং প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো ১) পারিবারিক ও বন্ধুবান্ধবের মধ্যকার বন্ধন জোরদার করা ২) সন্তান ও বাবামা/অভিভাবকের মধ্যে নিরাপদ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি ৩) শিশু ও কিশোরকিশোরীদের জীবনমুখী প্রশিক্ষণ যেমন কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ সামাজিক দক্ষতা বিকাশ প্রশিক্ষণ কীভাবে বাবামা ও বন্ধুদের সাথে দ্বন্দ্ব কাটানো যাবে কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ইত্যাদি ৪) মাদকের অপব্যবহার ও সহজলভ্যতা হ্রাস ৫) জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে বিবিধ সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা ৬) নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা দমন আইন সম্পর্কে জনগণ ও জনপ্রশাসনকে সোচ্চার করা ৭) সমাজে বেকারত্ব হ্রাস দারিদ্র বিমোচন করার লক্ষ্যে ক্ষুদ্রশিল্প প্রশিক্ষণ এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এটি একটি ক্রনিক রিল্যাপ্সিং ব্রেইন ডিজিজ বা পুনরায় হতে পারে এমন দীর্ঘমেয়াদি মস্তিষ্কের রোগ ক্রমাগত মাদক নিতে নিতে এক পর্যায়ে ব্যক্তিটি পুরোপুরি মাদকনির্ভর হয়ে পড়ে ও মাদক ছাড়া চলে না এই অবস্থাই হচ্ছে মাদকে আসক্তি মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতা মাদকদ্রব্য সমন্ধে কৌতূহল বন্ধুদের চাপে পড়ে মাদক গ্রহণ হতাশা ব্যর্থতার কাটাতে মাদক গ্রহণ পারিপার্শিক পরিবেশের প্রভাব নিছক আনন্দের জন্য মাদকাসক্তির লক্ষণসমূহঃ দৈনন্দিন এবং সাধার কাজকর্ম থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়া সময়মত কাজ সম্পন্ন করতে না পারা মানসিকতার দ্রুত পরিবর্তন হয় প্রচুর মিথ্যা কথা বলা কথায় কথায় অন্যদেরকে দোষারোপ করা দৈনন্দিন কাজে আগ্রহের অভাব কথায় অসংলগ্নতা অন্যদের সাথে যোগাযোগ করার দক্ষতার অভাব বিরক্তি কথা দিয়ে কথা না রাখা অপরাধবোধ আবেগের অস্থিতিশীলতা (হঠাৎ খুব রেগে যাওয়া) ঝিম ধরা ভাব অতিরিক্ত কথা বলা অথবা একেবারেই কথা না বলা ব্যক্তিত্বের পরিবর্তন আচরনের জন্য কার দর্শানো উদ্বিগ্নতা বিষন্নতা একা থাকা ইত্যাদি মাদকাসক্ত ব্যক্তি মনে করে তারা মাদককে খব সহজেই ছেড়ে দিতে পারবে কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে মাদকের প্রতি তীব্র আকর্ষ সৃষ্টি হয় তাই তারা মাদকদ্রব্য ছাড়তে পারেনা ফলে তাদের মাদকদ্রব্য গ্রহরে পরিমাণ দিনে দিনে বৃদ্ধি পায় কোন কারে মাদকদ্রব্য সেবন করতে না পারলে মাদকের অভাবে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয় যেসব বন্ধুরা মাদক গ্রহে উৎসাহ যোগায় অথবা সহযোগিতা করে তাদের থেকে দূরে থাকা কোন কারণে মন খারাপ থাকলে শিথিলকরণ ব্যায়াম করা যেসব ছাত্রছাত্রী একবার অথবা একাধিকবার কিছুটা মাদক নিয়েছে যেমন কোন ছাত্রছাত্রী হয়তোবা কখনও সিগারেট খেয়েছে এবং এখন তার আবার খেতে ইচ্ছে করছে সেই মহূর্তে সে পানি চকলেট বা অন্য কিছু খেতে পারে মাদক কে না বলা নিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করা ১) আমরা নিজেকে ভালোবাসব ২) আমরা পরিবার সমাজ ও দেশের একজন গুরুত্বর্পূ মানষ হিসেবে অবদান রাখার জন্য আজ থেকে আমরা সবাই মাদককে না বলবো ৩) আমরা কখনই মাদক গ্রহ করবোনা আমরা কখনই মাদক গ্রহ করবোনা আমরা কখনই মাদক গ্রহণ করবোনা (সবাই মিলে একসাথে তিনবার বলবে) নিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করা ১) আমরা নিজেকে ভালোবাসব ২) আমরা পরিবার সমাজ ও দেশের একজন গুরুত্বর্পূ মানষ হিসেবে অবদান রাখার জন্য আজ থেকে আমরা সবাই মাদককে না বলবো ৩) আমরা কখনই মাদক গ্রহ করবোনা আমরা কখনই মাদক গ্রহ করবোনা আমরা কখনই মাদক গ্রহণ করবোনা (সবাই মিলে একসাথে তিনবার বলবে) মাসিককালীন সময়ে মেয়েদের আমিষ আয়রন ক্যালসিয়াম ভিটামিন সি সমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার প্রয়োজন থাকে আমিষ আয়রন ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন সি উচ্চতর খাদ্যের উল্লেখ থাকে মাসিককালীন সময়ে স্বাভাবিকভাবে হাঁটাচলা এবং হালকা ব্যায়াম করতে হবে এবং পর্যাপ্ত ঘুম পাবার জন্য সঠিক সময় দিতে হবে মাসিকের সময় বিভিন্ন ধরনের স্যানিটারি ন্যাপকিন বা কাপড় ব্যবহার করতে হবে ব্যবহারের পর ন্যাপকিন/কাপড়টি সাবান ও পানি দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে এবং সূর্যের আলোতে শুকাতে হবে মাসিকের সময় স্বাভাবিক হাঁটাচলা এবং হালকা ব্যায়াম করতে হবে এবং পর্যাপ্ত ঘুম পাবার জন্য সঠিক সময় দিতে হবে মাসিকের সময় কৌষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর পানি শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবে মাসিক বন্ধ থাকলে বিশেষভাবে রক্তস্রাব বা ব্যথা অনুভব করলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে হবে মাটি থেকে বা অসুরক্ষিত জলের মাধ্যমে আপনার শিশুর কৃমি হতে পারে এবং এর ফলে সে অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে৷ আপনার শিশু মেঝেতে শোওয়া হামাগুড়ি দেওয়া বা খেলার আগে মেঝে সাবান জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে দিন৷ এটা তাকে সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করবে৷ যদি আপনি মেঝে পরিষ্কার করতে না পারেন তাহলে একটা বড় পরিষ্কার চাদর বা মাদুর পেতে দিন৷ আপনার শিশু বড় হওয়ার সাথে সাথে সে হয়ত বাইরে গিয়ে খেলতে চাইবে তবে কয়েকটা জায়গায় কৃমির সমস্যা থাকে৷ মাটি ও কাদা থেকে কৃমি সংক্রমণ হয় এবং এর ফলে পেটে যন্ত্রণা কাশি ও জ্বর হতে পারে৷ আপনার শিশু যখন বাইরে হাঁটতে শুরু করবে তখন মোটা মোজা চটি বা জুতো তাকে সুরক্ষিত রাখতে পারে৷ সাবান ও পরিষ্কার সুরক্ষিত জল দিয়ে ওর হাত ধুয়ে দিন৷ নিয়মিত ওর নখ পরিষ্কার করাও জরুরি৷ সে যখন মুখে হাত দেয় তখন এটা মাটি থেকে কৃমির ডিম ওর শরীরে প্রবেশ করায় বাধা দেবে যদি আপনার শিশুর কৃমির সংক্রমণ থাকে তাহলে আপনি হয়ত জানতেও পারবেন না৷ আপনার শিশুর কোনোরকম কৃমির সংক্রমণ হলে কৃমিনাশক ওষুধ সেগুলোকে মেরে দেয় যদি আপনার শিশুর কৃমি নাও থাকে তাহলেও এগুলি তার জন্য সম্পূর্ণ নিরাপদ৷ আপনার শিশুর বয়স 1 বছর হওয়ার পরে প্রতি 6 মাসে তাকে এই কৃমিনাশক ওষুধ দিন৷ বাচ্চার সঙ্গে কথা বলো যাতে ও শিখতে পারে তোমার বাচ্চার এখন আগের থেকে অনেক বেশি জোর হয়েছে ও হয়তো এখন কয়েক সেকেণ্ড ধরে মাথা তুলে রাখতে পারে ও এখন চোখে আরো ভালো করে ঠাহর করতে পারে আর ওর দৃষ্টিরও উন্নতি হচ্ছে হয়তো দেখবে তোমার বাচ্চা ওর নিজের হাতের দিকে তাকিয়ে আছে ও এখন বুঝতে শুরু করছে যে ওটা ওর নিজের হাত এবং সে ওটা ব্যবহার করতে পারে অল্প দিনের মধ্যেই ও জিনিসপত্র ধরার জন্য হাত বাড়াবে ও আরো ভালো করে শুনতেও পাচ্ছে আর কোথা থেকে শব্দ আসে তা বুঝতেও পারছে তুমি হয়তো দেখবে ও শব্দের দিকে মাথা ঘোরাচ্ছে মোটামুটি এই সময়ে তুমি লক্ষ্য করবে যে তোমার বাচ্চা দিনের বেলায় বেশিক্ষণ জেগে থাকে এবং তার কিছু বাঁধাধরা সময় আছে যখন সে খেলতে চায় ও এখন দিন আর রাতের তফাৎ বুঝতে পারছে খুব তাড়াতাড়ি ও ওর হাত পা টান করতে শুরু করবে ওকে হাত পা ছড়ানোর জন্য যথেষ্ট জায়গা দাও মেঝেতে একটা কম্বল পেতে তার উপরে ওকে ছেড়ে দাও উপুড় হয়ে শুয়ে থাকলে ও হয়তো পা দিয়ে ঠেলা দিতে শুরু করতে পারে এতে ওর বাড়ন্ত পেশিগুলোর জোর বাড়বে তুমি হয়তো ভাববে গান শোনানো বা কথা বলার জন্য তোমার বাচ্চা এখনও অনেক ছোট কিন্তু সেটা করলে ভালো হবে তোমাকে গান গাইতে বা ওর সঙ্গে কথা বলতে শুনলে ওর কথা বলা শিখতে সুবিধা হবে তুমি যখন গান গাইছ বা ওর সঙ্গে কথা বলছ তখন যদি ও অন্য দিকে তাকায় বা আগ্রহ হারিয়ে ফেলে তাহলে অন্য কিছু করো বা ওকে একটু বিশ্রামের সময় দাও যদি এইগুলি দেখেন তাহলে হয়ত আপনার শিশুর পেটের গোলমাল বা উদরাময় হয়েছে শ্লেষ্মা নামের আঠালো দুর্গন্ধময় তরলযুক্ত জলের মত দুর্গন্ধময় পায়খানা হচ্ছে৷ বার বার ওর এই পায়খানা হচ্ছে ওর জ্বর আছে মনে হচ্ছে ওর ওজন কম হয়ে যাচ্ছে যদি আপনার শিশু নোংরা জল খায় বা নোংরা বা পচা খাবার খায় তাহলে ওর উদরাময় বা পেট খারাপ হতে পারে৷ নবজাতকদের প্রায়ই পায়খানা হয় কখনো কখনো প্রথম মাসে দিনে 5 বার পর্যন্ত পায়খানা হতে পারে তবে আপনি যদি ওকে শুধুই বুকের দুধ খাওয়ান তাহলে সম্ভবত এটা পেটের গোলমাল নয়৷ কখনো কখনো ছোট্ট শিশুরা প্রত্যেকবার বুকের দুধ খাওয়ার পরে পায়খানা করে৷ তার কারণ তার পেট যেই দুধে ভরে যায় ওর বেগ আসে৷ যেসব শিশু বুকের দুধ খায় সাধারণত তাদের পায়খানা হলদেটে হয় ও মিষ্টি গন্ধ হয় এবং নরম হয়৷ 1 মাস বয়সে পৌঁছে বেশির ভাগ শিশুর দিনে 1 বা 2 বার পায়খানা হয়৷ কখনো কখনো যেসব শিশু বুকের দুধ খায় তারা সারা সপ্তাহে মাত্র একবার মলত্যাগ করে৷ এটাও স্বাভাবিক৷ 6 মাস বয়সে যখন আপনার শিশু শক্ত খাবার খেতে শুরু করলে তখন ওর পায়খানায় পরিবর্তন হতে পারে৷ তবে আপনার শিশু একবার তার নতুন খাদ্যাভ্যাসে অভ্যস্ত হয়ে গেলে তার মল আবার স্বাভাবিক হয়ে যায়৷ তাই আপনার শিশুর পায়খানার ব্যাপারে নজর রাখুন৷ যদি আপনার শিশুর ঘন ঘন দুর্গন্ধময় জলের মত শ্লেষ্মাযুক্ত পায়খানা হয় গায়ে জ্বর থাকে এবং ওজন কম হচ্ছে বলে মনে হয় তাহলে হয়ত আপনার শিশুর উদরাময় বা পেটের গোলমাল হয়েছে৷ ওকে স্বাস্থ্য কর্মীর কাছে নিয়ে যান৷ হ্যাঁ খাবার ওকে তাড়তাড়ি সুস্থ করে তোলে শরীরের শক্তি ফিরে পাওয়ার জন্য আপনার শিশুর খাবার খাওয়া দরকার৷ সব শিশু কখনো না কখনো অসুস্থ হয়৷ আপনার শিশুকে অসুস্থ দেখে আপনার মন খারাপ হয়ে যায় তবে ওর সঠিক যত্ন করে ও চিকিৎসা করিয়ে এবং ওকে ভালো করে খাইয়ে আপনি ওকে সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করতে পারেন৷ যদি আপনার শিশুর বয়স 6 মাসের কম হয় আপনার বুকের দুধ ওকে সেরে উঠতে সাহায্য করবে৷ আপনার বুকের দুধ ওর জন্য স্বাস্থ্যকর৷ এটা আপনার শিশুর শক্তিবৃদ্ধিতে সাহায্য করবে৷ যদি আপনার শিশুর পাতলা পায়খানা হয় বুকের দুধ ওর পেটের পক্ষে ভাল হবে অসুস্থতার ফলে ওর যে পুষ্টিক্ষয় হচ্ছে সেই পুষ্টি ফিরিয়ে দেয়৷ যদি আপনার শিশুর বয়স 6 মাসের বেশি হয় তাহলে ওকে খিচুড়ি চটকানো কলা বা আলু খাওয়ানো চালিয়ে যান৷ স্বাদ বাড়াতে সামান্য মাখন ঘি বা তেল মিশিয়ে দিন৷ যদি ওর বমি বা পাতলা পায়খানা হয় তাহলেও ওর খাওয়া দরকার৷ খাবার ওকে সুস্থ হয়ে উঠতে সাহায্য করবে৷ যদি ও খেতে না চায় তাহলে সারা দিনে বার বার ওকে অল্প করে খেতে দিন৷ এটা ওর শরীর সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করবে যদি একটা দিন কেটে যাওয়ার পরেও আপনার শিশু অসুস্থ থাকে বা ওর পেটের গোলমাল এক দিনের বেশি চলে তাহলে ওকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান৷ যখন আপনার শিশু একটু সুস্থ বোধ করতে শুরু করবে তখন 2 সপ্তাহ ধরে ওকে অতিরিক্ত 2 বার খেতে দিন৷ এটা ওর স্বাভাবিক সুস্থতা ফিরে পেতে ওকে সাহায্য করবে অনেক শিশুই 6 এবং 8 সপ্তাহ বয়সে প্রথমবার মুখে হাসি ফোটায়৷ তবে আপনার শিশু এই সময়ের আগে বা পরেও হাসা শুরু করতে পারে৷ যদি আপনার শিশুকে হাসতে উৎসাহী করতে চান তাহলে এমন একটা সময় বেছে নিন যখন সে সজাগ অথচ শান্ত থাকে৷ যখন আপনার শিশু আপনার দিকে তাকিয়ে থাকে ও মনোযোগ সহকারে আপনার মুখ দেখতে থাকে এমন একটা সময় বেছে নিন৷ আপনার শিশুকে মুখোমুখি ধরে রাখুন ও ওর সঙ্গে কথা বলুন আপনাদের দুজনের মুখ যেন খুব কাছাকাছি থাকে৷ যদি আপনার শিশুর সেটা পছন্দ না হয় তাহলে আপনাদের মধ্যে সামান্য ব্যবধান রাখার চেষ্টা করুন৷ প্রথমে হয়ত অনেকক্ষণ ধরে নিবিষ্ট মনে ও আপনার মুখের দিকে তাকিয়ে থাকে তাই অনবরত শান্তভাবে ওর সঙ্গে কথা বলতে থাকুন হঠাৎ হয়ত সেই প্রথম স্মিত হাসি ওর মুখে ফুটে উঠবে ঐ সামান্য হাসতে শেখার পরে খুব তাড়াতাড়ি প্রাণ খুলে হাসতে শিখে যায় বেশির ভাগ শিশু 2 এবং 4 মাস বয়স থেকে জোরে হাসতে শুরু করে৷ বিচিত্র মুখভঙ্গী ও শব্দ করা বা ওকে সুরসুরি দেওয়ার চেষ্টা করুন৷ প্রায় 12 মাস বয়সে অধিকাংশ শিশু প্রথম তাদের পা ফেলে অনেক শিশু 14 বা 15 মাস বয়সে পৌঁছে বেশ ভালোমত হাঁটতে পারে৷ আপনার শিশুর যদি একটু বেশি সময় লাগে চিন্তা করুন না৷ অনেক শিশু 17 বা 18 মাস বয়সের আগে হাঁটে না৷ যখন আপনার শিশু প্রথম তার পা ফেলে তখন তাকে সাহায্য করুন৷ সাহায্যের জন্য সে আপনার হাত ধরবে বা দেওয়াল বা আসবাব ধরে থাকে৷ ওর এই চেষ্টার জন্য ওর প্রচুর প্রশংসা করুন ওকে আদর করুন একা প্রথম পা ফেলার আত্মবিশ্বাস এবং ভারসাম্য শিখতে হয়ত আপনার শিশুর আরো কয়েক মাস সময় লাগবে৷ তারপর বেশ কয়েক মাস পরে তার হাঁটায় সুস্থিরতা এবং নিয়ন্ত্রণ আসবে৷ আপনার শিশুর বড় হয়ে ওঠার একটা গুরুত্বপূর্ণ অধ্যায় এই হাঁটতে শেখা৷ এটা তার ছোট্ট শিশু থেকে বড় হয়ে ওঠার এই পরিবর্তনকে সূচিত করে৷ আপনার সন্তানের বিকাশ নিয়ে যদি আপনার দুশ্চিন্তা থাকে তাহলে স্বাস্থ্য কর্মীর সঙ্গে কথা বলুন৷ তোমার বাচ্চা কথা বুঝতে পারে তোমার বাচ্চা এখন ছোট ছোট শব্দ আর বাক্যের টুকরো বুঝতে শুরু করে বড়দের ভাষা ব্যবহার করে ওর কথাগুলোই আবার ওকে বলো আস্তে আস্তে ও স্বনির্ভর হতে শিখবে আর তুমি ওকে ছেড়ে গেলে কান্নাকাটি কম করবে কিন্তু মাঝেমধ্যে ওকে ছেড়ে যেতে গেলে গোলমাল হবে আর প্রচুর চোখের জল পড়বে তোমার গন্ধ লেগে আছে এমন কিছু যেমন তোমার পরা কাপড় যদি ওর কাছে থাকে তাহলে ওর শান্ত হতে সুবিধা হবে এই বয়েসে তোমার বাচ্চা ভালোভাবে বসতে পারে এবং আসবাব ধরে হয়তো হাঁটতেও পারে কয়েক সেকেণ্ডের জন্য হয়তো ও হাত ছেড়ে দিয়েই দাঁড়াতে পারে বা তুমি ওর হাত ধরে থাকলে কয়েক পা হাঁটতেও পারে এই রকম বয়েসে তোমার বাচ্চা পুরো খাবার নিজে হাতে খেতে শিখবে ও কাপ থেকে পান করতে চাইবে এটা একটা নতুন দক্ষতা যেটা শেখার জন্য ওকে কয়েক মাস ধরে অভ্যাস করতে হবে তোমার বাচ্চা এখন সহজ নির্দেশ বুঝতে পারে তার মানে এই নয় যে ও সব সময় না কথাটা গ্রাহ্য করবে ও না শব্দটা ভালো ভাবে বুঝবে যদি সেটা ওকে ঠিক আর ভুল নিরাপদ আর বিপজ্জনকের মধ্যে তফাৎ শেখানোর জন্য ব্যবহার করা হয় যখন আপনার শিশুর বয়স 6 মাস হয় তখন বুকের দুধে পাশাপাশি সে খুব অল্প পরিমাণে নরম চটকে দেওয়া পরিবারের সাধারণ খাবার খেতে পারে৷ প্রথমদিকে এক চামচ দেওয়া যথেষ্ট৷ ওর মুখোমুখি বসুন এবং আপনার পরিষ্কার আঙুলে বা চামচে করে ওকে সামান্য নরম খাবার খেতে দিন৷ সেই খাবার কীভাবে মুখের ভিতরে ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে খেতে হয় ও গিলতে হয় সেই ব্যাপারটা বুঝতে হয়ত ওর খানিকটা সময় লাগবে৷ ধৈর্য্য ধরুন ও শিখে নেবে৷ শুরুতে ওকে দিনে একবার করে চটকানো খাবার খেতে দিন তারপর দিনে দুবার এবং তারপরে দিনে 3 বার করে দিন৷ চটকানো খাবার খাওয়ানোর আগে ও পরে ওকে বুকের দুধ খেতে দিন৷ ক্রমশ ওর খাওয়ায় আত্মপ্রত্যয় বাড়ার সাথে সাথে ওকে আরো দলা পাকানো খাবার খেতে দেওয়া যায়৷ প্রথমে আপনি ওকে ভালো করে রান্না করা সুজি (উপমা পায়েস বা হালুয়া) দলিয়া সাবুদানা (পায়েস বা খিচুড়ি) ভাত ও ডাল দিতে পারেন যাতে ওর নানা স্বাদগন্ধের খাবার খেতে শিখতে পারে খাবার খাওয়ার পরে আপনার শিশুর পায়খানায় পরিবর্তন হবে আরো গাঢ় ও দুর্গন্ধময় হয়ে উঠবে৷ এটা স্বাভাবিক৷ যখন আপনার শিশু নিজে নিজে জিনিস হাতে তুলে নিতে শুরু করবে তখন বুঝবেন তাকে আরো পেট ভরা খাবার খেতে দেওয়ার সময় হয়েছে৷ ওকে ভালো করে সিদ্ধ করা ডিম ভালো করে কাঁটা ছাড়ানো চটকানো মাছ বা হাড় বাদ দেওয়া মাংস আলু ও বীন বা যদি ওর দাঁত উঠতে শুরু করে তাহলে শুকনো পাউরুটি বা রাস্ক দিয়ে দেখতে পারেন৷ আপনার শিশুর খাবারে নুন বা মশলা মেশাবেন না৷ এখন সে হামাগুড়ি দিয়ে বেড়াচ্ছে আপনার শিশুর এখন দিনে 3 থেকে 4 বার খাওয়া দরকার৷ আহার ছাড়াও ওকে জলখাবার খেতে দিন৷ তবে ওর খাবার অবশ্যই নরম হতে হবে যাতে ও জিভ দিয়ে আরো নরম করে গিলে খেতে পারে৷ ও যখন খাবার খায় ওর পাশে থাকুন যাতে গলায় আটকে না যায়৷ খাবার খাওয়ার আগে ওর হাত সাবান ও পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে দিন৷ এখনও আপনার বুকের দুধ ওর জন্য স্বাস্থ্যকর তাই যখন চাইবে ওকে বুকের দুধ খাওয়ান৷ এখন ও বড় হচ্ছে তাই পরিষ্কার সুরক্ষিত পেয় জলও খেতে পারে তবে ওকে চা কফি কোলা বা চিনিযুক্ত পানীয় দেবেন না৷ তোমার বাচ্চা তোমায় নকল করতে পারে তোমার বাচ্চা এখন তার চারপাশটার সঙ্গে পরিচিত এবং ও চেনাজানা জিনিস পছন্দ করে এই বয়েসে ও হয়তো একটু গায়ে ল্যাপটানো স্বভাবের হতে পারে এবং ওকে ভোলাতে হয় ওর নিজের কম্বল বা পছন্দের খেলনা সঙ্গে রাখতে পারলে ও হয়তো শান্ত থাকে যাতে ওর মনে হয় যে বাইরে বেরোলেও বাড়ির একটা টুকরো ওর সঙ্গেই রয়েছে শোরগোল আর অচেনা লোকজনের থেকে দূরে চুপচাপ থাকতে পারলেও ওর মানিয়ে নিতে সুবিধা হবে এতদিনে তোমার বাচ্চা মনে রাখতে শিখেছে যেমন ওর খেলনাপাতি কোথায় থাকে দু সপ্তাহ আগে দেখা কোন কাজও ও নকল করতে পারে কিন্তু তবুও ও সব কিছু মনে রাখতে পারে না দু থেকে তিন বছরের আগে তোমার বাচ্চার দীর্ঘমেয়াদী স্মৃতি তৈরি নাও হতে পারে তোমার বাচ্চার আধো আধো শব্দগুলো এখন সত্যিকারের কথার মত শোনাতে আরম্ভ করতে পারে তোমার বাচ্চা ভাবছে যে ও কিছু বলছে কাজেই সেই ভাবেই ওর কথায় সাড়া দাও ওর সঙ্গে তোমার কথা বলা আর ওর দিকে তাকানো থেকে ও কথাবার্তা আর মুখের ভাবভঙ্গি শিখবে তোমার বাচ্চা এখনও তোমার কথার চেয়ে তোমার স্বরের ওঠানামা থেকেই বেশি বোঝে ও জানে কখন ও তোমায় খুশি করেছে তাই তখন খুব করে প্রশংসা করো তোমার বাচ্চার স্বভাব এখন পুরোপুরি ফুটে উঠছে ও হয়তো খুব মিশুকে হতে পারে যাকে দেখে তার দিকেই তাকিয়ে হাসে অথবা খুব লাজুক মুখ ঢেকে ফেলে তোমার বাচ্চা এখন তোমার নজর কাড়তে জানে আর তোমাকে দরজার দিকে যেতে দেখলে হয়তো হাত নাড়িয়ে বিদায় জানাতে পারে যদি আপনার শিশুর পেটের গোলমাল হয় তাহলে ওর শরীর থেকে যে তরল বার হয়ে যাচ্ছে তার অভাবপূরণ করা দরকার তা না হলে ওর শরীরে জলাভাব হবে৷ অর্থাৎ ওর শরীরে যথেষ্ট জল অবশিষ্ট নেই৷ ওকে বার বার বুকের দুধ খেতে দিন এবং যতবার চাইবে ততবার ওকে খাওয়ান৷ যদি ওর বয়স 6 মাসের কম হয় ওর জলের প্রয়োজন নেই৷ বুকের দুধ ওর সব প্রয়োজন পূরণ করবে৷ তবে ওকে আরো বেশি করে বুকের দুধ খেতে দিন৷ ওর হয়ত একবারে খাওয়ার শক্তি থাকে না তাই আরো বেশি করে ওকে খাওয়ানো দরকার৷ যদি ওর বয়স 6 মাসের বেশি হয় বুকের দুধ খাওয়ানো ছাড়াও মাঝেমধ্যে ওকে অল্প অল্প করে চুমুক দিয়ে পরিষ্কার সুরক্ষিত (ফুটিয়ে ঠান্ডা করা) জল খাইয়ে দিন৷ সম্ভব হলে ওকে প্রতি ঘন্টায় কয়েক বার চুমুক দিয়ে ওরাল রিহাইড্রেশন সলিউশন (ওআরএস) খাওয়ানোর চেষ্টা করুন৷ ওআরএস এক প্রকারের পাউডার যা এক লিটার পরিষ্কার ফুটিয়ে ঠান্ডা করা জলে গুলে নিতে হয়৷ আপনি এটা তৈরী করে রেখে দিতে পারেন এবং 812 ঘন্টার মধ্যে ব্যবহার করে নিতে পারেন৷ প্রত্যেকবার পাতলা পায়খানার পরে আপনার শিশুকে 1520 চাচামচ ওআরএস খাইয়ে দিন৷ আধ ঘন্টার ব্যবধানে মুখে চাচামচ ধরুন৷ যদি আপনার শিশু ওআরএস না খেতে চায় তাহলে আপনি নুন চিনি দিয়ে লেবুর জল ডাল বা ভাতের মাড় ডাবের জল বা নোনতা ঘোল দিতে পারেন৷ ওকে ফলের রস কোলা বা চিনিসহ পানীয় দেবেন না৷ এতে পেটের গোলমাল বেড়ে যেতে পারে৷ যত শীঘ্র সম্ভব আপনার শিশুকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান যদি 1 দিনের বেশি ওর পেটের গোলমাল থাকে ওর ত্বক বা ঠোঁট শুকিয়ে যায় ওর প্রস্রাবের রং গাঢ় হলুদ দেখায় ও কম ঘন ঘন প্রস্রাব হয় ওর ব্রক্ষ্মতালু ভিতরদিকে ঢুকে যায় ও কোনো পানীয় খেতে না চায় পায়খানার সঙ্গে রক্ত পড়ে বা পেট ফুলে যায় এক দিনের বেশি সময় ধরে বমি হয় বা এক দিনের বেশি জ্বর থাকে এতদিনে তোমার বাচ্চা হয়ত হামাগুড়ি দিচ্ছে বা পিছন ঘষে ঘষে এগোচ্ছে আপনার বাচ্চা চলতে শুরু করলে সে গুঁতো বা আছাড় খেতে শুরু করবে এটা বেড়ে ওঠার একটা অঙ্গ ওকে ঘুরে বেড়াতে দেখে মজা পাও কিন্তু তোমার বাড়িটাকেও যতটা পারো নিরাপদ বানাও তোমার বাচ্চা জিনিসপত্র ঝাঁকিয়ে ঠুকে ফেলে এবং ছুঁড়ে সেগুলো সম্বন্ধে জানছে ও শিখছে যে কোন একটা জিনিস নিয়ে সে কী করতে পারে তুমি যে সব জিনিসপত্র ব্যবহার করো তোমার বাচ্চা এখন সেগুলোতে আগ্রহ দেখাবে আস্তে আস্তে ও জিনিস ঠিকমত ব্যবহার করতে শুরু করবে তুমি হয়তো দেখবে ও নিজের চুল আঁচড়াতে বা কাপ থেকে জল খেতে চেষ্টা করছে তোমার বাচ্চার দৃষ্টি এখন অনেক পরিষ্কার হয়েছে ও প্রায় তোমার মতই দেখতে পায় এখন ও ঘরের অন্য দিকে থাকা লোকজন বা জিনিস চিনতে পারে ও হয়তো ঘরের অন্য দিকে একটা খেলনা দেখে সেটার দিকে হামাগুড়ি দিয়ে যেতে চেষ্টা করে ওর চোখের রং প্রায় শেষ পর্যন্ত যা হবে সেই রকম হয়ে এসেছে অবশ্য পরে ছোটখাট বদল তোমার চোখে পড়তেও পারে খুব তাড়াতাড়ি তোমার বাচ্চা দেওয়াল আর আসবাব ধরে দাঁড়াতে এবং ঘরের মধ্যে চলে ফিরে বেড়াতে শুরু করবে আপনার শিশুর যখন 6 মাস বয়স হয়ে যায় তখন ওর শক্ত খাবার খাওয়া দরকার৷ তবে তখনো তার বুকের দুধ খাওয়া দরকার৷ বয়স বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আপনার শিশুর আরো বেশি করে এবং আরো নানা ধরণের খাবার খাওয়া দরকার তবে ছোট শিশুরা খাওয়া নিয়ে বায়না করতে পারে এবং সহজেই হয়ত তাদের খাবারে অনীহা হয়ে যায়৷ আপনার শিশু যাতে ভালো করে খাওয়াদাওয়া করে তা সুনিশ্চিত করার জন্য কয়েকটা টিপস ওকে প্রচুর পরিমাণে সুস্বাদু খাবার খেতে দিন৷ হাতে সময় নিয়ে বসুন৷ যখন ও খাবে তখন ওর কাছে বসুন ওর সঙ্গে কথা বলুন৷ খাওয়াটা ওর জন্য একটা নতুন দক্ষতা ও এখনো সেটা আয়ত্তে আনার চেষ্টা করছে৷ যদি আপনার শিশু খেতে না চায় তাহলে ধৈর্য্য ধরে অপেক্ষা করুন৷ ওকে জোর করে খাওয়াবেন না৷ ওকে চিনি চিপস ভাজাভুজি বা অন্য অস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে দেবেন না৷ ঐসবে কোনো খাদ্যগুণ নেই এবং আপনার শিশুর জন্য ক্ষতিকর৷ ওকে রং স্বাদ ও সুগন্ধযুক্ত নানা রকমের খাবার খেতে দিন৷ শিশু বড় হয়ে ওঠার সাথে সাথে প্রায়ই তার রুচিতে পরিবর্তন হয়৷ আপনার শিশু যে খাবার আজকে খেতে চাইছে না সেটাই হয়ত কয়েক সপ্তাহ পরে ওর প্রিয় খাবার হয়ে যায় আহারের সময়টা মজাদার করে তুলুন৷ লক্ষ্য রাখুন ও যেন স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে এবং আপনাদের দুজনের জন্য আহারের সময়টা আনন্দময় হয়ে ওঠে৷ ওর চোখের দিকে তাকিয়ে হেসে কথা বলুন৷ ওর আহারের সময়টা যেন পরস্পর মেলামেশার একটা সময় হয়৷ তাতে ওর খেতে সুবিধা হবে তাছাড়া এইভাবে ওর সামাজিক দক্ষতা এবং নতুন শব্দ শেখা হবে৷ খেতে বসে যদি আপনার শিশু সহজেই অন্যমনস্ক হয়ে যায় তাহলে ওকে শান্ত নিরিবিলি পরিবেশে নিয়ে যান এবং মৃদুভাবে ওকে খেতে উৎসাহিত করুন৷ এখন আপনার শিশু চলাফেরা করছে সে যাতে নিরাপদে খেলা করতে পারে আপনার তা সুনিশ্চিত করা প্রয়োজন৷ আপনার শিশু যাতে জলের বালতি বা গরম উনুন বা আগুনের নাগাল না পায় সে বিষয়ে নিশ্চিত হয়ে নিন৷ আলমারির দরজা বন্ধ করে রাখুন এবং বাক্স পেটরা উপরে ওর নাগালের বাইরে তুলে রাখুন৷ পরিষ্কার করার জিনিস যেমন ব্লিচ ও কাপড় কাচার সাবান শিশুর ক্ষতি করতে পারে তাই সেসব তালা বন্ধ করে রাখুন৷ আপনি নিজে হামাগুড়ি দিন যাতে আপনার শিশুর দৃষ্টিকোণ থেকে জগতকে দেখতে পারেন ঝুলন্ত তার বা গাছপালা দেখে সে লোভে হাত বাড়িয়ে টান মারতে পারে তাতে ঐসব জিনিস ওর উপরে এসে পড়তে পারে৷ পার্স ব্যাগ ও বাজারের থলি উপরে তুলে রাখুন যাতে ও নাগালে না পায়৷ প্রতিদিনকার সাধারণ জিনিসপত্র যেমন লিপস্টিক ও প্রসাধনীও ওর জন্য ক্ষতিকর হতে পারে৷ লক্ষ্য রাখুন ওষুধ ও ট্যাবলেট ইত্যাদি যেন ওর নাগালের বাইরে থাকে৷ ওকে শৌচালয় ও নোংরা জামাকাপড় থেকে দূরে রাখুন৷ এছাড়া লক্ষ্য রাখুন ও যেন জল জন্তু জানোয়ার ও তাদের মলমূত্র থেকে দূরে খেলা করে৷ মাটিতে কেঁচো ও পোকামাকড় থাকতে পারে৷ সম্ভব হলে আপনার শিশু খেলতে শুরু করার আগে মেঝে সাবান জল দিয়ে ধুয়ে পরিষ্কার করে দিন৷ এটা ওকে সুরক্ষিত রাখতে আর কৃমি হওয়া আটকাতে সাহায্য করে৷ যদি আপনি মেঝে পরিষ্কার করতে না পারেন তাহলে একটা বড় পরিষ্কার চাদর বা শতরঞ্চি পেতে দিন৷ যখন আপনার শিশু দাঁড়াতে ও হাঁটতে শেখে তখন অবশ্যই ওর পায়ে ঢিলে মোজা বা জুতো পরিয়ে দিন৷ এটা ওকে কৃমি থেকে সুরক্ষিত রাখবে৷ ছেলে ও মেয়ে দুজনের সমান পরিমাণ খাবার প্রয়োজন৷ ওর জীবনের প্রথম 6 মাসে আপনার শিশুর শুধু আপনার বুকের দুধ দরকার৷ এর পরে আপনি আপনার শিশুকে যা খাবার দেন তার পরিমাণ ক্রমশ বাড়িয়ে দিতে পারেন৷ তবে 2 বছর বয়স না হওয়া পর্যন্ত তার বুকের দুধ খাওয়া দরকার৷ এইভাবে ধীরে ধীরে তার খাবারের পরিমাণ বাড়াতে হয় 6 মাস বয়স এখনও আপনার শিশুর প্রধান খাদ্য হল বুকের দুধ তবে এখন সে অন্যান্য খাবার খাওয়া শুরু করতে পারে৷ দিনে দুবার আপনার শিশুকে পরিবারের বাকি সবার খাবার ভালো করে চটকে খেতে দিন৷ প্রতিবারের আহারে 2 গ্রাস যথেষ্ট৷ মায়ের দুধ ছাড়ানোর জন্য মামুলী খাবার যেমন খিচুড়ি ডালের জল ও সব্জির ঘ্যাঁট দিয়ে শুরু করুন৷ আপনি ও আপনার পরিবার যা খাচ্ছেন আপনার শিশুকে তাই দিতে পারেন তবে লক্ষ্য রাখুন সেসব যেন ভালো চটকে নেওয়া হয়৷ আপনার শিশুর খাবারে নুন বা মশলা মেশাবেন না৷ 8 মাস বয়স আপনার শিশুর দিনে 3 বার আহার করা দরকার৷ প্রত্যেকবারের আহারে সে যা খাবে তার পরিমাণ ক্রমশ বাড়িয়ে প্রায় 3 গ্রাস করে দিন৷ 9 মাস বয়স এখন ওর একবারের আহারের পরিমাণ বাড়িয়ে অর্ধেক বাটি খাবার করে দিতে হবে৷ ওর বাকি 2 বারের আহারে এখনও ওকে প্রায় 3 গ্রাস খাবার খাইয়ে যান৷ এতদিনে সে নিজে তুলে খেতে শিখে যাবে৷ তাই ও যাতে নিজের হাতে খাবার মুখে তুলে খেতে পারে সেইজন্য ওকে রুটি পাউরুটি পুরভরা পরোটা বা সব্জি সিদ্ধ ছোট ছোট টুকরো করে খেতে দিন৷ 10 মাস বয়স আপনার শিশুকে দিনে 2 বার করে অর্ধেক বাটি খাবার খেতে দিন৷ অন্য অবশিষ্ট আহারের সময় ওর কয়েক চামচ খাবার খাওয়া যথেষ্ট৷ 1 বছর বয়স ওর দিনে 3 বা 4 বার অর্ধেক বাটি খাবার খাওয়া ছাড়াও জলখাবার খাওয়া দরকার৷ তার পরের বছর থেকে ক্রমশ ওকে বাটি ভরে খেতে দিন৷ এই 4টি উপায়ে আপনি আপনার বাড়িতে আপনার শিশুকে সুরক্ষিত রাখতে পারেন আপনার শিশু যেসব জিনিস তুলে নিতে পারে রোজ বাড়িতে সেগুলির প্রতি বিশেষ লক্ষ্য রাখুন৷ নিশ্চিত হোন যে ছোট ছোট জিনিস যেমন কয়েন যেগুলি ওর গলায় আটকে যেতে পারে সেসব যেন ওর নাগালের বাইরে থাকে৷ ছুরি কাঁচি ও পেন এবং যা মুখে দেওয়া নিরাপদ নয় এমন সব জিনিস দূরে সরিয়ে রাখুন৷ আপনার রান্নার জ্বালানি পানীয় বা জলের বোতলে ভরে রাখবেন না৷ আপনার শিশু ভুল করে খেয়ে নিতে পারে৷ কোনো জিনিস যাতে আপনার শিশুর উপরে এসে না পড়ে সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখুন৷ সবকিছু সুরক্ষিত অবস্থায় আছে কিনা দেখে নিন৷ বিদ্যুতের তার বা অন্য কোনো রশি বা দড়ি ভাল করে গুটিয়ে ওর নাগালের বাইরে সরিয়ে রাখা উচিত যদি আপনি ল্যাম্প বা টেবিল বা মেঝেতে দাঁড় করানোর পাখা ব্যবহার করেন তাহলে সেগুলো সুরক্ষিত আছে কিনা দেখে নিন৷ আপনার শিশুকে জল ও আগুন থেকে দূরে রাখুন৷ আপনার শিশু সব কিছু অনুসন্ধান করতে চায় জ্বলন্ত শিখা স্পর্শ করলে ওর হাত পুড়ে যেতে পারে৷ আপনি যখন রান্না করবেন তখন যেন ও কোনো গরম জিনিস স্পর্শ না করতে পারে সেদিকে লক্ষ্য রাখুন৷ গন্ডি তৈরী করে দেওয়ার চেষ্টা করুন৷ ওকে জলের বড় বড় পাত্র থেকে দূরে রাখুন৷ ঐগুলি শক্ত ঢাকনা দিয়ে রাখুন যাতে ও ঐগুলির ভিতরে পড়ে না যায়৷ মনে রাখুন যখন আপনার শিশু দাঁড়াতে ও হাঁটতে শুরু করবে তখন হয়ত ও বেয়ে বেয়ে চড়তে চাইবে লক্ষ্য রাখুন বিপজ্জনক জিনিসপত্র ও তার যেন ওর নাগালের বাইরে থাকে এবং ও যাতে চেয়ার ও টেবিল থেকে পড়ে না যায় সে ব্যাপারে সতর্ক থাকুন৷ 8 এবং 10 মাস বয়সে পৌঁছে বেশির ভাগ শিশু প্রথম উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করে৷ আপনার শিশু হয়ত আপনার হাত বা দেওয়াল বা আসবাবে ভর দিয়ে উঠে দাঁড়ানোর চেষ্টা করবে৷ প্রথমে আপনার শিশুকে আপনাকে ধরে বা শক্ত আসবাব ধরে দাঁড়াতে হবে৷ 11 মাস বয়সে হয়ত আপনার সাহায্য ছাড়াই সে দাঁড়াতে পারবে৷ এরকম করলে ওর প্রচুর প্রশংসা করুন ওকে আদর করুন৷ আত্মপ্রত্যয় ক্রমশ বাড়তে থাকলে আপনার শিশু আসবাবপত্র ধরে ধরে হাঁটাচলা শুরু করে দেয়৷ এটা করতে পারলে ও খুব শিগগীর হাঁটতে শিখে যায় হয়ত আপনার শিশু সহজেই দাঁড়াতে পারবে কিন্ত আবার বসতে তার অসুবিধা হতে পারে দাঁড়িয়ে থাকার অবস্থা থেকে বসে পড়ায় আপনি আপনার শিশুকে সাহায্য করতে পারেন৷ ওকে টেনে তুলে আবার বসিয়ে না দিয়ে বরং কীভাবে হাঁটু ভাঁজ করতে হয় তা ওকে দেখিয়ে দিন৷ এরপর এটা চেষ্টা করতে ওকে উৎসাহ দিন কয়েক দিন বা সপ্তাহের মধ্যে ও নিজের হাঁটু মুড়ে বসতে শিখে যায়৷ যখন আপনার শিশু চলাফেরা করতে শিখবে তখন ওর সাথে থাকুন যাতে যদি ও পড়ে যায় তাহলে ওর যাতে ব্যথা না লাগে আপনি তা নিশ্চিত করতে পারেন৷ অর্থাৎ ও যখন নিজে নিজে প্রথমবার হাঁটে আপনার তা দেখাও বাদ পড়বে না সব শিশুর বিকাশের গতি আলাদা কয়েকজনের অন্যদের তুলনায় দ্রুত বিকাশ হয়৷ আপনার শিশুর বিকাশের ব্যাপারে যদি আপনার চিন্তা হয় তাহলে স্বাস্থ্য কর্মীর সঙ্গে কথা বলুন৷ তোমার বাচ্চাকে হাসাও তোমার বাচ্চা খুব তাড়াতাড়ি পালটাচ্ছে ও এখন সাধারণ শব্দগুলো করতে পারে হয়তো এ মাসে ও মামা –র মত কোনো শব্দও বলতে পারে না বললেও চিন্তা কোরো না সব বাচ্চা আলাদা আলাদা গতিতে বাড়ে এতদিন পর্যন্ত তোমায় ওকে সব সময় দেখতে হয়েছে এখন ও হয়তো খুশি হয়েই কিছুক্ষণ নিজে নিজে খেলবে তুমি হয়তো দেখবে ও মনের আনন্দে নিজের হাত পা নিয়ে খেলছে এই বয়সে তোমার বাচ্চার পক্ষে প্রিয়জন বা বিশ্বস্ত বন্ধুদের সঙ্গে থাকা ভালো যত বড় হবে ওকে ততই অন্যদের সঙ্গে মেলামেশা শিখতে হবে তোমার পরিবারের লোকরা ওকে জড়িয়ে ধরে আদর করতে খুব আনন্দ পাবে তুমি বাড়ি ফিরে ওকে অনেক আদর করতে পারো যদিও তোমার বাচ্চা কান্না দিয়েই তার ইচ্ছেগুলো সবথেকে ভালো করে বোঝাতে পারে তবে ও এখন মজাও বুঝতে শিখছে ওর সঙ্গে লুকোচুরি খেলো কম্বলের আড়াল থেকে তোমার মুখটা বেরোতে দেখলে ও হাসে কিনা তা দেখো এই বয়েসে উপুড় হয়ে শুযে থাকলে ও হয়তো হাতে ভর দিয়ে ঘাড় ও মাথা তুলতে পারে তোমার বাচ্চা হয়তো চিৎ থেকে গড়িয়ে উপুড়ও হয়ে যেতে পারে যেদিকে ও সাধারণত পাশ ফেরে সে দিকে একটা খেলনা নাচিয়ে ওকে উৎসাহ দাও ও পাশ ফিরে গেলে হাততালি দাও আর হাসো তোমার বাচ্চা খেলতে ভালোবাসে তোমার বাচ্চার নমনীয়তা বাড়ছে ও এখন হাতের আঙুল মুঠো করতে আর খুলতে কিংবা হাততালি দিতে আনন্দ পাবে তোমার বাচ্চার মজা পাওয়ার ক্ষমতাও বাড়ছে কাতুকুতু দিলে বা পেটে শব্দ করে চুমু খেলে ও হাসবে জন্ম থেকেই তোমার বাচ্চা ছোঁয়া পেতে ভালোবাসে ওর বেড়ে ওঠার জন্য সেটা দরকারি স্নানের পর একটু মালিশ বা ঘুমোনোর আগে বেশ অনেকক্ষণ ধরে আদর করে জড়িয়ে রাখাটা তোমাদের দুজনের জন্যই ভালো শুধুমাত্র খেলাও তোমার বাচ্চার মস্তিষ্ক গড়ে তুলতে সাহায্য করে ওর মস্তিষ্ক যতো গড়ে উঠবে তত ওর কৌতূহলও বাড়বে ও হয়তো একটা ছোট খেলনা নিয়ে খেলবে যেটা ও ধরতে আর ঝাঁকাতে পারে ও রং আকার ও মাপ সম্বন্ধেও শিখবে খেলনা থেকে যে শব্দ হয় তার থেকে আর সেটা নরম কিম্বা শক্ত সেই অনুভূতি থেকেও ও শিখবে তুমি নানা রকম মজার মুখ করলে তোমার বাচ্চা আস্তে বা খিলখিল করে হাসতে শুরু করবে এবং ছেলেমানুষি কাণ্ডকারখানায় খুব আনন্দ পাবে নানা রকম শব্দ শুনতেও ওর মজা লাগবে জিভ দিয়ে টক টক আওয়াজ করো শিস দাও বা জন্তুজানোয়ারের ডাক ডাকো ও এটা পছন্দ করবে হ্যাঁ আপনি একা নন ক্লান্তবোধ করা স্বাভাবিক ব্যাপার অনেক মায়েদের এমন মনে হয়৷ গর্ভধারণ করলে আপনার পুরো শরীরে চাপ পড়ে৷ এটা আপনাকে খুব ক্লান্ত করে দিতে পারে৷ আপনি যদি সাধারণত দেরী করে ঘুম থেকে ওঠেন তাহলেও এখন সন্ধ্যার পরে হয়ত আপনার জেগে থাকতে অসুবিধা হবে৷ নিশ্চিত হয়ে নিন আপনি যেন দিনের বেলায় ঘন ঘন ছোট ছোট বিশ্রাম নেন৷ দিনের বেলায় যে সময়টা সবচেয়ে বেশি গরম থাকে বিশেষ করে যখন এটা আর্দ্র এবং স্যাঁতস্যাতে থাকে তখন বিশ্রাম করার চেষ্টা করুন৷ সারা দিন ধরে প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খান৷ এটা আপনার দেহকে গর্ভাবস্থার সাথে ভালোভাবে মানিয়ে নিতে সাহায্য করবে এবং আপনি কম ক্লান্ত বোধ করবেন৷ গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে আপনি হয়ত সবসময় ক্লান্ত অনুভব করেন৷ আপনার ছোট্ট শিশুকে বড় করে তোলার জন্য আপনার শরীর প্রচুর কর্মশক্তি এবং খাবার ব্যবহার করছে৷ 3 মাসে পৌঁছে আপনি অপেক্ষাকৃত কম ক্লান্ত বোধ করবেন তাসত্ত্বেও দিনের বেলায় পর্যাপ্ত বিশ্রাম করা জরুরি৷ এছাড়া আপনার হরমোনের মাত্রা এবং কর্মশক্তির প্রয়োজনেও দ্রুত পরিবর্তন ঘটে চলেছে৷ আপনার রক্তে শর্করা অর্থাৎ সুগার এবং রক্ত চাপও কম থাকার সম্ভাবনা থাকে৷ এই সব কারণে ক্লান্তি বাড়ে৷ এছাড়া আয়রনের স্তর কম হওয়ার ফলেও আপনি ক্লান্ত বোধ করতে পারেন৷ আপনার ডাক্তার হয়ত আপনাকে প্রতিদিন আয়রনের ট্যাবলেট নিতে বলবেন৷ এটা আপনার এবং আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য অত্যন্ত জরুরী৷ যদি আপনার আয়রনের মাত্রা খুব কম থাকে তাহলে আপনি আরো বেশি ক্লান্ত বোধ করবেন এবং কর্মশক্তির অভাব হবে৷ আয়রনের ট্যাবলেট আপনার শিশুর গায়ের রং কালো করে দিতে পারে না৷ এ কথা সত্যি নয়৷ যদি ট্যাবলেট খেয়ে আপনার কোষ্ঠকাঠিন্য হচ্ছে বলে মনে হয় তাহলে আপনার ডাক্তারকে জানাবেন যাতে তিনি আপনাকে অন্য ধরণের ট্যাবলেট সেবনের পরামর্শ দিতে পারেন৷ গর্ভাবস্থায় পেটে ব্যথা বেদনা ও খিঁচ ধরা স্বাভাবিক ঘটনা৷ সাধারণত এটা দুশ্চিন্তার কারণ নয়৷ আপনার গর্ভের শিশুকে ক্রমশ বেড়ে উঠতে সাহায্য করতে আপনার শরীরে পরিবর্তন ঘটছে এবং বাড়ন্ত শিশুকে জায়গা করে দিতে আপনার জরায়ু প্রসারিত হচ্ছে৷ সাধারণত একটু বিশ্রাম নিলে এই খিঁচের উপশম হয়৷ বিশ্রাম করার চেষ্টা করুন৷ পা একটু তুলে অল্পক্ষণ বসে থাকুন বা যে পাশে ব্যথা হচ্ছে তার উল্টোদিকে পাশ ফিরে শুয়ে থাকুন৷ কখনো কখনো পেটে ব্যথা গোলমালের লক্ষণ হতে পারে গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে পেটে খিঁচ স্ত্রী যোনি থেকে রক্তপাত এবং তলপেটের মাঝখানে বেদনার অর্থ আপনি হয়ত আপনার গর্ভস্থ সন্তানকে হারাতে চলেছেন৷ আপনার এমন কোনো অনুভূতি হলে হাসপাতালে যান৷ যদি আপনার খুব বেশি রক্তপাত হয় এবং ঘন্টায় 1 টার বেশি প্যাড ভিজে যায় তাহলে আপনাকে তক্ষুণি হাসপাতালে যেতে হবে৷ যদি একপাশে যন্ত্রণাদায়ক খিঁচ ধরে এবং সারা পেটে ছড়িয়ে পড়ে তার মানে ভ্রুণ ভুল জায়গায় বেড়ে উঠছে৷ আপনার গাঢ় ও জলের মত রক্তপাত হতে পারে৷ গর্ভাবস্থার প্রথমদিকে এমন হয়৷ তক্ষুণি হাসপাতালে যান৷ গর্ভাবস্থার পরের পর্যায়ে যদি আপনার তলপেটে বেদনা হয় এবং তার সঙ্গে পিঠে ব্যথা পেটে খিঁচ এবং পেটের গোলমাল হয় তার মানে আপনার যথাসময়ের আগে প্রসব হতে পারে৷ যদি গর্ভাবস্থার পরের দিকে আপনার বার বার যন্ত্রণা হয় যদি রক্তপাত হয় বা জল ভাঙে তাহলে হাসপাতালে যান৷ এখন যেহেতু আপনি গর্ভবতী তাই আপনার ভালো করে খাওয়াদাওয়া করা উচিত যাতে আপনার শিশুর ভালো বিকাশ হয়৷ আপনার এবং আপনার বাড়ন্ত শিশুর নানা রকমের প্রচুর খাবার খাওয়া দরকার৷ এটা করার একটা সহজ উপায় হল নানা রঙের প্রচুর খাবার খাওয়া আপনার যেসব খাবার খাওয়া দরকার সে ব্যাপারে আপনার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে দেখতে পারেন৷ প্রতি দিন এই প্রতিটি খাদ্য শ্রেণীর কয়েকটা খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন ফল এবং শাক সব্জি৷ যাতে কোনো জন্মগত সমস্যা না থাকে সেইজন্য এইগুলি আপনার শিশুকে সুরক্ষা দেয়৷ শ্বেতসারযুক্ত খাবার৷ এতে আছে রুটি ভাত ভুট্টা এবং আলু৷ এইসব খাবার আপনার শক্তি জোগাবে৷ প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার৷ এতে আছে ডিম বীন ডাল মুর্গি মাছ এবং মাংস৷ এইসব খাবার শরীর গড়ে তোলে৷ ক্যালিয়াম সমৃদ্ধ এবং দুগ্ধজাত খাবার৷ এতে আছে দুধ দুধের তৈরী খাবার ছানা দই ছোলা এবং দই৷ শিশুর মজবুত হাড়ের বিকাশে এইগুলি সাহায্য করে৷ আয়রনসমৃদ্ধ খাবার৷ এইগুলি আপনাকে এবং আপনার শিশুকে শক্তিশালী করে তোলে৷ আয়রন সমৃদ্ধ খাবারগুলি হল আছে মাংস গুড় এবং সবুজ শাক সব্জি৷ পাতি লেবু কমলালেবু এবং আমলকীর মত লেবুজাতীয় ফল এই আয়রন শোষণে শরীরকে সাহায্য করে৷ আয়োডাইজড নুন ব্যবহার করুন৷ আয়োডাইজড হলে তা প্যাকেটে লেখা থাকে৷ আয়োডিন শিশুকে বলিষ্ঠ এবং সুস্থ করে তুলতে সাহায্য করে৷ তোমার বাচ্চার চোখে চোখ রাখো এই সময় নাগাদ তোমার বাচ্চা দুটো চোখ দিয়েই জিনিসের উপর নজর করবে ওর সামনে তুমি খেলনা নাড়ালে ও লক্ষ্য করবে কিন্তু সেটা সরিয়ে নিলে ও সেটার কথা ভুলে যাবে তোমার বাচ্চার মনে রাখার ক্ষমতা রোজ বাড়ছে ও খেলনার কথা ভুলে যাবে কিন্তু তোমার গলা ও সব সময়ে চিনতে পারবে আর তোমার গর্ভে থাকার সময় থেকে ও সেটা চেনে তোমার বাচ্চাকে স্নান করানো তোমাদের দুজনের কাছেই মজাদার হতে পারে একটা পরিষ্কার তোয়ালে নাও আর ওকে অনেকটা পরিষ্কার নিরাপদ পানি দিয়ে স্নান করাও পানিটা যেন কুসুমগরম থাকে খুব গরম না হয় বেশির ভাগ বাচ্চাই আরাম করে পানির মজা নেবে ওর হয়তো তোমার ভেতরে থাকার কথাও মনে পড়তে পারে ওকে কখনো পানিতে একা ছেড়ে যেও না তোমার বাচ্চার মুখের দিকে তাকিয়ে চোখে চোখ রাখা খুব ভালো কাজ এতে ও মানুষের সঙ্গে মিশতে শিখবে খুব তাড়াতাড়িই তোমার বাচ্চা তোমার মুখ চিনে যাবে ও হয়তো অন্যদের চাইতে তোমায় বেশি পছন্দ করতে পারে তোমায় দেখলে ও আধো আধো আওয়াজ করে খুশিতে পা ছুঁড়তে পারে কিছুদিনের মধ্যেই তুমি ওর প্রথম হাসি দেখতে পাবে তোমার বাচ্চা ওর চারপাশটাও খেয়াল করছে শব্দ ওকে টানবে আর রঙচঙে নকশাও ওর ভালো লাগবে এতদিনে তোমার বাচ্চা হয়তো উপুড় হয়ে শু্যে থাকলে মাথা আর বুক উঁচু করতে পারে নিজের মাথাটা নিয়ন্ত্রণ করতে শেখা ওর জন্য একটা গুরুত্বপূর্ণ ধাপ তোমার বাচ্চা প্রতিদিন তোমার কথা আরো বেশি করে শুনছে তুমি কথা বললে ও হয়তো সব থামিয়ে তোমার কথা শোনে ওর সঙ্গে কথা বলতে থাকো ওর করা আওয়াজগুলো নকল করো তোমার বাচ্চার সঙ্গে কথা বললে ও শান্ত থাকবে আর তোমার সঙ্গে কথা বলার উৎসাহ পাবে যদি আপনার শিশু দিনে অন্তত 6 থেকে 8 বার দুধ খায এবং আপনি তাকে স্বচ্ছন্দ্যে খাওয়াতে পারেন তাহলে হয়ত সে যথেষ্ট পরিামণ দুধ পাচ্ছে৷ সে যখন দুধ খাবে আপনি দেখতে পাবেন যে সে গিলছে এবং খাওয়ানোর পরে আপনার স্তন খালি ও নরম মনে হবে৷ আরেকটি ভালো লক্ষণ হল আপনার শিশু যদি চোষার সময় তার খাওয়ার গতিতে পরিবর্তন হতে থাকে ও মাঝে মধ্যে বিশ্রাম নেয়৷ সে তৈরী হলে নিজেই আবার খেতে শুরু করবে আবার ইচ্ছা না হলে মুখ সরিয়ে নেবে৷ আপনার শিশু যথেষ্ট দুধ পাচ্ছে কিনা তা তার ন্যাপি দেখেও বোঝা যায়৷ তার পায়খানার রং হলদে হওয়া উচিত এবং হয়ত প্রায়ই পায়খানা করবে৷ বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে হয়ত সে সপ্তাহে একবার মাত্র পায়খানা করবে৷ যদি তিন দিনে একবার বা সপ্তাহে মাত্র একবার সে ন্যাপি নোংরা করে তাহলেও ঠিক আছে৷ কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য তার কোনো ভেষজ নিরাময় বা বাড়তি জলের প্রয়োজন নেই৷ যখন ওর ন্যাপি বদলে দেন তখন তার শরীর থেকে যে জল বেরিয়ে যায় তা বিবর্ণ হওয়া উচিত এবং কোনো দুর্গন্ধ হওয়া উচিত না৷ প্রতি দিন তার অন্তত 6 থেকে 8 টা ন্যাপি ভিজিয়ে দেওয়া উচিত৷ যদি শিশুর ন্যাপিতে কমলা বা ইট রঙের দাগ দেখতে পান তাহলে ঘাবড়াবেন না৷ গরম স্যাঁতস্যাঁতে আবহাওয়ায় কখনো কখনো এমন হতে পারে৷ আপনার শিশু যতবার খেতে চাইবে তাকে ততবার করে খাওয়াতে থাকুন৷ যে শিশু যথেষ্ট দুধ খেতে পায় তার ত্বক অনমনীয় হয় ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল ত্বক হয় যা আলতো চিপলে শিগগির আগেকার মত অনমনীয় হয়ে যায়৷ যদি আপনার দুশ্চিন্তা হয় যে আপনার শিশু যথেষ্ট দুধ পাচ্ছে না তাহলে স্বাস্থ্য কর্মীকে জিজ্ঞাসা করুন৷ আপনার শিশু সুস্থ সবল কিনা তারা পরীক্ষা করে দেখতে পারবেন৷ বুকের দুধ খাওয়ালে আপনার খুব খিদে পেতে পারে আপনাকে স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি করে খেতে হবে৷ আপনার শরীর খুব ভালোভাবে দুধ তৈরী করতে পারে তবে যদি আপনি যথেষ্ট খাবার না খান তাহলে আপনি ক্লান্ত বোধ করতে ও অজ্ঞান হয়ে যেতে পারেন৷ প্রচুর তাজা ফল ও শাক সব্জি যেমন শাক আম কমলালেবু কলা খাওয়ার চেষ্টা করুন৷ নানা রঙের খাবার খান যাতে আপনি প্রচুর ভিটামিন ও খনিজ পদার্থ পান আলু ভাত রুটি দালিয়া এবং খাদ্যশস্যর মতো খাবার যা কর্মশক্তি জোগায় সেগুলো খান৷ প্রোটিন খান যা ডিম ছানা ডাল মাছ মুর্গি ও মাংসে পাবেন৷ প্রতি দিন দুধ নারকেলের দুধ দই বাদাম ও বীজ খাওয়ার চেষ্টা করুন৷ বিভিন্ন ধরণের নানারকম খাবার খান তাহলে আপনার শরীর আপনার শিশুকে ভালো করে খাওয়ানোর জন্য সবরকম পুষ্টি পাবে৷ প্রতি দিন নিয়মিত বাঁধাধরা সময়ে 3 বার প্রধান আহার করার চেষ্টা করুন৷ সারা দিনে প্রচুর হাল্কা জলখাবার বা স্ন্যাক্স খান যাতে কর্মশক্তি বজায় থাকে৷ শুকনো ফল বাদাম তাজা ফল সব্জি ও বীজ এ সবই ভালো স্ন্যাক্স৷ বুকের দুধ খাওয়ানোর সময় আপনার আয়রন ও ক্যালসিয়ামের ট্যাবলেট খাওয়া চালিয়ে যান৷ বুকের দুধ খাওয়ালে হয়ত আপনার তেষ্টা পাবে৷ আপনার শিশুকে খাওয়ানোর আগে কিছু পানীয় খেয়ে নিন৷ পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খাওয়া ভালো৷ দুধ তৈরী করার জন্য আপনাকে দুধ খেতে হবে না তবে আপনাকে প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খেতে হবে৷ অত্যধিক চা কফি কোলা বা বুদবুদযুক্ত পানীয় খাবেন না৷ এইগুলি সারা দিনে শুধু 1 বা 2 গ্লাস খাওয়া যথেষ্ট৷ যদি আপনার খেতে ইচ্ছা না করে তার মানে হয়ত আপনার আরো সাহায্য দরকার৷ যদি আপনার খাবারে অনীহা হয় এবং আপনার জোর করে খেতে হয় তাহলে আপনার স্বাস্থ্য কর্মীর সঙ্গে কথা বলুন৷ আপনার সন্তানের জন্মের পরে কয়েক সপ্তাহে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করিয়ে নেওয়া ভালো এবং ভরসাদায়ক এভাবে আশ্বস্ত হওয়া যায় যে আপনি এবং আপনার শিশু সন্তান দুজনই ভালো আছেন৷ সপ্তাহ 1এ অন্তত একবার এবং আবার তার 6 সপ্তাহ বয়সে আপনার শিশুকে নিয়ে ডাক্তারের কাছে যান৷ আপনার শিশুকে অবিলম্বে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান যদি তার পেট খুব ঠান্ডা বা খুব গরম হয় তার জীবনের প্রথম দিনেই তার চোখ হাত ও পা হলুদ হয়ে যায় সে খেতে না চায় বা ভালো করে চুষতে না পারে তার কান্না বন্ধ না হয় বা অস্বাভাবিকভাবে কাঁদে তার ফিট হয় তন্দ্রাচ্ছন্ন থাকে ও বেশি নাড়াচাড়া না করে বা তার ত্বক বা নখ নীলচে হয়ে যায় সে দ্রুত শ্বাসপ্রশ্বাস নেয় শ্বাসে শোঁ শোঁ শব্দ হয় বা খনখনে আওয়াজ হয় এক দিনের বেশি সময় ধরে সে প্রত্যেকবার খেয়ে বমি করে দেয় বা তার পেট ফুলে যায় আপনার শিশুর নাড়ির গোড়া লাল হয়ে যায় বা দুর্গন্ধ বের হয় এইসব আপনার শিশুর অসুস্থতার লক্ষণ এবং এর জন্য অবিলম্বে চিকিৎসা প্রয়োজন৷ মনে রাখুন ছেলে বা মেয়ে সব শিশুর একইরকম স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো দরকার৷ সব শিশু কাঁদে৷ এইভাবে তারা নিজেদের প্রয়োজনগুলির ব্যাপারে আমাদের জানায় বা বোঝায়৷ কয়েকজন শিশু অন্যদের তুলনায় একটু বেশি কাঁদে৷ সাধারণত খিদে পেলে আপনার শিশু কেঁদে ওঠে৷ তাই সে কাঁদলে তাকে যতক্ষণ ইচ্ছা বুকের দুধ খেতে দিন৷ পেট ভরে গেলে শিগগির তার কান্নার শান্ত হবে৷ কয়েকজন শিশু অস্বস্তিবোধ করলে কাঁদে৷ আপনার শিশুর পোশাক খুব আঁটো কিনা বা তার ন্যাপি ভিজে বা নোংরা হয়ে গিয়েছে কিনা দেখে নিন৷ অথবা তার হয়ত খুব ঠান্ডা লাগছে বা খুব গরম লাগছে৷ সে কতগুলি জামাকাপড় পরে আছে দেখে নিন৷ আপনি যতগুলি জামাকাপড় পরে আছেন তার চেয়ে আর 1 টা বেশি পোশাকের আবরণে তার যথেষ্ট আরামবোধ করা উচিত৷ তাছাড়া আপনার শিশু হয়ত বিশ্রাম করতে বা কোলে উঠতে চায় আপনার শিশু কাঁদলে তাকে শান্ত করার 3টি উপায় হল ওকে কম্বলে জড়িয়ে রাখুন৷ শিশুরা জঠরে যেমন আবরণের আরাম ও নিরাপদ বোধ করত তাই অনুভব করতে চায়৷ একটা ঝোলা তৈরী করে তাকে আপনার শরীরের সঙ্গে ধরে রাখুন৷ আপনার হৃদস্পন্দন হয়ত তাকে শান্ত করে তুলবে ওকে গান গেয়ে শোনান বা মৃদুভাবে দোলান৷ যদি আপনার শিশু না থেকে অনবরত কাঁদতে থাকে বা স্বাভাবিকের তুলনায় তারস্বরে কাঁদতে থাকে তাকে আপনার ডাক্তারের কাছে নিয়ে যান৷ তোমার বাচ্চার জন্য একটা পুরো নতুন পৃথিবী এই বিরাট হট্টগোলে ভরা পৃথিবীটা তোমার বাচ্চার কাছে একেবারেই নতুন তুমি দেখবে ওর অভ্যাস মতো ও কেমন এলোমেলো ভাবে হাত পা নাড়ে খুব তাড়াতাড়ি ওর নড়াচড়া অনেক সহজ হয়ে আসবে তোমার হয়তো চিন্তা হবে বাচ্চা যথেষ্ট দুধ পাচ্ছে না বলে যদি তোমার বাচ্চা প্রতি 2 থেকে 3 ঘণ্টা অন্তর খায় বা দিনে অন্তত 8 বার খায় তাহলে তা যথেষ্ট তোমার বাচ্চার পায়খানার রং দেখেও তা খুব ভালো করে বোঝা যায় এটার রং প্রথমে কালো থাকে তারপরে 4 দিনের মাথায় হলুদ হয়ে যায় তোমার বাচ্চা চুষতে মুঠো করে ধরতে চোখের পাতা ফেলতে এবং তোমার দুধের বোঁটা খুঁজতে পারে মাঝেমাঝে ও সোজা তোমার চোখের দিকে তাকাবে ফিরে তাকিয়ে হেসে বা মাথা নেড়ে সাড়া দিলে খুব ভালো হয় ও খুব তাড়াতাড়ি সব শিখে নিচ্ছে দু সপ্তাহের কাছাকাছি সময়ে নজর রেখো তোমার বাচ্চা উপুড় হয়ে শুয়ে থাকলে মাথা তুলতে চেষ্টা করছে কি না ও হয়তো এ পাশ থেকে ও পাশে মাথা ঘোরাতেও পারে এতে ওর গলার পেশির জোর বাড়ে তোমার বাচ্চার বয়স 1 মাসেরকাছাকাছি হলে ও আস্তে আস্তে ওর সদ্য জন্মানোর সময়ের শিউরে ওঠা আর চমকে ওঠার স্বভাব হারাতে শুরু করবে প্রতি দিন ওর জোর বাড়ছে আর ও চারদিকের জগৎটাকে চিনে নিচ্ছে একটা খুব মনকাড়া পরিবর্তন যেটা ও করতে শুরু করছে সেটা হল মুখে আধো আধো শব্দ করা ও এইভাবে তোমার সঙ্গে কথা বলে তুমিও ওরকম শব্দ করতে চেষ্টা করো ওকে কোল থেকে নামিয়ে দূরে সরে গেলেও কথা বলতে থাকো আপনার শিশুর জন্মের পরে আপনার শরীর গর্ভফুল বাইরে বার করে দেয় যাকে প্ল্যাসেন্টা বলা হয়৷ আপনি আবার সংকোচন অনুভব করবেন তবে এবার তেমন তীব্রভাবে না৷ আপনার নবজাতককে আপনার ত্বকের সঙ্গে স্পর্শ করে ধরে রাখুন৷ ও বুকের দুধ খাওয়ার জন্য আপনার স্তন খুঁজবে৷ যত শীঘ্র সম্ভব ওকে স্তন দিন৷ এইভাবে স্তনপান করালে আপনার সংকোচন বাড়বে যা আরো সহজে আপনার গর্ভফুল ঠেলে বাইরে বার করে দিতে পারবে৷ এই গর্ভফুল এবং জলের খালি থলি আপনার জরায়ুর নিচের দিকে নেমে আসবে৷ এইগুলি আপনার যোনি দিয়ে বাইরে বার হয়ে যায়৷ আপনার শিশুকে আপনার বুকের কাছে ধরে রাখুন৷ ওকে আপনার ত্বকের সংস্পর্শে রাখলে ও উষ্ণ থাকে বুকের দুধ খেতে সুবিধা হয় এবং আপনার রক্তপাতের পরিমাণ কম করতে সাহায্য করে৷ প্রসবের পর বিশ্রাম করুন এবং আপনার শিশুকে ভালো করে দেখুন রক্ত শুষে নেওয়ার জন্য আপনার কয়েকটা প্যাড বা পরিষ্কার ন্যাকড়া লাগবে৷ প্রথমদিকে বেশি মাসিক স্রাবের মত বেশি রক্তপাত হবে৷ ক্রমশ তা অনেক কম হয়ে যায়৷ আপনার শিশুর জন্মের পরে বেশ কয়েক সপ্তাহ এই রক্তপাত চলতে পারে৷ শিশুর জন্মমাত্র তাকে উষ্ণ রাখা একান্ত জরুরি৷ শিশুরা জরায়ুর বাইরের নতুন অপেক্ষাকৃত ঠান্ডা তাপমাত্রায় মানিয়ে নিতে পারে না এবং খুব তাড়াতাড়ি উষ্ণতা হারিয়ে ফেলতে পারে৷ আপনার শিশুর জন্মমাত্র তার সারা শরীর ভেজা থাকে তাই লক্ষ্য রাখুন তার গা যেন মুছে শুকিয়ে দেওয়া হয়৷ অন্তত 6 ঘন্টার জন্য তাকে স্নান করানোর প্রয়োজন নেই৷ আপনার শিশুর জীবনের প্রথম 6 ঘন্টায় শুধু ওর নাড়ি সাফ করে দিন৷ এছাড়া আপনার শিশুর স্নানের প্রয়োজন নেই৷ খুব শীঘ্র আপনার শিশুকে স্নান করালে ও অসুস্থ হয়ে পড়তে পারে এবং ঠান্ডা লেগে যেতে পারে৷ আপনার সেবিকাকে আপনার বুকের আবরণ সরিয়ে তার উপর আপনার শিশুকে শুয়ে দিতে বলুন৷ আপনার শরীরের উষ্ণতায় ওর কম ঠান্ডা লাগবে৷ ওকে ভালো করে ধরে রাখুন যাতে হাত থেকে পিছলে পড়ে না যায়৷ আপনাদের দুজনের উপরে পরিষ্কার উষ্ণ কাঁথা বা কম্বল চাপা দিয়ে রাখুন৷ এইভাবে উষ্ণতা ধরে রাখা যায়৷ ওকে নিরাপদ রাখতে আপনি একটা ঝোলা তৈরী করে নিতে পারেন৷ এছাড়া একটা ছোট টুপি বা কাপড় দিয়ে ওর মাথা ঢেকে রাখুন৷ শিশুদের মাখা দিয়ে অনেকটা উষ্ণতা বাইরে বেরিয়ে যায়৷ ত্বকের সংস্পর্শে রেখে আপনার শিশুকে উষ্ণতা দিলে আপনার শিশু ও আপনি একে অপরকে ভালোমত বুঝতে শিখবেন৷ কে আপনাকে এতদিন লাথি মারছিল তা আপনি দেখতে পাবেন এইভাবে আপনার শিশুকে বুকের কাছে ধরে রাখলে আপনার শিশু সহজেই স্তন খুঁজে দুধ খেতে পারবে৷ আপনার শিশু সন্তানকে আপনার বুকের দুধ খাওয়ানোই আপনার স্তন দুটির কাজ প্রথম 6 মাস সুস্থ থাকার জন্য আপনার সন্তানের শুধু আপনার বুকের দুধ প্রয়োজন৷ 6 মাসের আগে তার শক্ত খাবার খাওয়ার প্রয়োজন নেই৷ তার অন্য কোনো ধরণের দুধের প্রয়োজন নেই৷ তার জল বা অন্য কোনো পানীয়েরও প্রয়োজন নেই৷ আপনার বুকের দুধ সবার সেরা৷ আপনার সন্তান বেড়ে ওঠার সঙ্গে এতে পরিবর্তন হতে থাকে৷ প্রসবের পরে আপনি প্রথম যে দুধ তৈরী করেন তা ক্রিমের মত এবং ভিটামিন ও খাদ্যগুণ সমৃদ্ধ হয় যাতে সে সংক্রমণের মোকাবিলা করতে পারে৷ এগুলো তাকে সুস্থ থাকতে সাহায্য করে৷ এর পরে আপনার দুধ বদলে গিয়ে আরো সাদা হয়ে যায় ও ঘনত্ব কমে যায়৷ এটা তার তেষ্টা মেটায় তাই গরমকালেও তার জল খাওয়ার দরকার হয় না৷ আপনার সন্তানের প্রয়োজনগুলি পূরণ করার জন্য আপনার দুধ বদলাতে থাকে৷ আপনার সন্তান যত দুধ খাবে আপনি তত বেশি দুধ তৈরী করবেন৷ আপনার স্তন দুটি যদি ছোট হয় তাহলেও আপনার সন্তানের জন্য আপনার শরীর পর্যাপ্ত পরিমাণে দুধ তৈরী করতে পারবে৷ আপনি আপনার ছোট্ট নবজাতকের জন্য এবং তার 6 মাস বয়সের সন্তানের জন্য উপযুক্ত পরিমাণে দুধ তৈরী করতে পারেন৷ আপনার বুকের দুধের সাহায্যে আপনার শিশু তার পেট ফুসফুস মূত্রথলি ত্বক ও কানের জীবাণুগুলির মোকাবিলা করতে পারবে৷ যেসব শিশু জীবনের প্রথম বছরে শুধু বুকের দুধ খায় তারা অন্য যেসব শিশু অন্যান্য দুধ খেয়ে বড় হয় তাদের তুলনায় কম অসুস্থ হয়৷ যদি আপনাকে কাজে যোগ দিতে হয় তাহলে আপনি নিজের বুকের দুধ চিপে বার করে রাখতে পারেন এবং অন্য কেউ আপনার শিশুকে তা খাইয়ে দিতে পারে৷ আপনার শিশুর পরিচর্যাকারীকে ঝিনুক বাটি দিয়ে আপনার শিশুকে আপনার বুকের দুধ খাওয়ানোর পদ্ধতি শিখিয়ে দিন৷ বুকের দুধ চিপে বার করার পরে 6 ঘন্টা পর্যন্ত তা নষ্ট হয় না৷ 6 মাস পরে আপনার বাড়ন্ত শিশুর বুকের দুধ ছাড়াও আরো কিছু খাওয়া দরকার হয়৷ তবে সে শক্ত খাবার খেতে শেখার পরেও 2 বছর বয়স পর্যন্ত আপনার বুকের দুধ তার জন্য অপরিহার্য৷ সবচেয়ে ভালো ভঙ্গি বেছে নিন আরাম করে বসুন প্রথমে নিজের জন্য এক গ্লাস পরিষ্কার সুরক্ষিত খাওয়ার জল নিন সেটা হাতের কাছে রাখুন৷ বুকের দুধ খাওয়াতে গিয়ে আপনার তেষ্টা পেতে পারে৷ তারপর বসার জন্য আরামদায়ক জায়গা বেছে নিন যাতে আপনার শিশুকে এমনভাবে ধরে রাখতে পারেন যাতে আপনার হাত ও পিঠে ব্যথা না হয়৷ লক্ষ্য রাখুন যাতে পিঠে হেলান দিয়ে বসা যায় এবং আপনাকে পিছনে বেঁকে বসতে না হয়৷ আপনার শিশুকে অবলম্বন দিতে বালিশ বা কাঁথা হাতের কাছে রেখে নিন৷ বিভিন্ন অবস্থায় বসে দেখুন৷ অনেক মায়েরা বালিশ বা কুশন উঁচু করে তাদের নবজাতককে তার উপরে রেখে বুকের কাছে ধরে রাখায় স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন৷ কিংবা আপনার শিশুকে বাহুর নিচ দিয়ে ধরুন যাতে তার পা নিচের দিকে থাকে ও তার মাথাটা আপনার বুকের কাছে থাকে৷ আপনি যেভাবে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন তাই করুন৷ আপনারা দুজনেই যখন স্বচ্ছন্দ্য অবস্থায় এলে আপনার শিশুর মুখটা আপনার স্তনের কাছে নিয়ে আসুন ও খাওয়াতে শুরু করুন৷ আপনার শিশুকে খাওয়াতে 5 থেকে 40 মিনিট সময় লাগতে পারে৷ কোলাহলের পরিবেশে অসুবিধা হলে শান্ত জায়গা বেছে নিন৷ যদি আপনার একঘেয়ে লাগে তাহলে রেডিও বা টিভি চালিয়ে রাখুন অথবা বন্ধু বা আত্মীয়কে সঙ্গ দিতে বলুন৷ মা হওয়ার জন্য তৈরি হও তোমার বাচ্চা এখন যে কোনো দিন জন্মাতে পারে তোমার গর্ভের ভেতরে ও এখন গর্ভাবস্থার মাঝামাঝি সময়ে গজানো পাতলা চুলগুলো ঝরিয়ে ফেলছে গর্ভের ভেতরের তরলে ভেসে থাকার সময় ওকে রক্ষার জন্য চামড়ার উপর যে মোমের মত আস্তরণ ছিল সেটাও এখন মিলিয়ে যাচ্ছে তোমার বাচ্চার চামড়ার তলায় চর্বির পরত তৈরি হচ্ছে যা ওকে জন্মানোর পরে গরম রাখতে সাহায্য করবে সদ্য জন্মানো বাচ্চাদের গরম রাখতে হয় এটা করার সব থেকে ভালো উপায় হল ওকে জোমার জামাকাপড়ের নিচে বুকের কাছে জড়িয়ে রাখা তুমি হয়তো ভাবছ প্রসব শুরু হলে কী করে বুঝবে তিন ভাবে প্রসব শুরু হতে পারে 1 তোমার অন্তর্বাসে সাদা স্রাবের সঙ্গে রক্তের দাগ লাগতে পারে এটা পরের এক বা দুদিনের মধ্যেই প্রসব শুরু হওয়ার চিহ্ন 2 তোমার হয়তো মাসিকের ব্যথার মত খিঁচব্যথা উঠতে পারে প্রসব যত এগিয়ে আসে এই ব্যথা তত জোরালো নিয়মিত এবং আরো যন্ত্রণাময় হয় 3 তোমার হয়ত অল্প বা অনেকটা জল ভাঙতে পারে এরকম হলে সোজা স্বাস্থ্যকেন্দ্রে চলে যাওয়া উচিত প্রসব শুরু হওয়ার আগেই কী ভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যাবে সেটা নিশ্চিত করে জেনে নাও প্রসবের সময় তোমায় দেখাশোনা করার জন্য একজন দাই নার্স বা ডাক্তার লাগবে তোমার ফোনে টাকা বেঁচে আছে কি না এবং বাস বা ট্যাক্সির জন্য টাকা আছে কিনা দেখে নাও যখন আপনার প্রসবের শুরু হয় তখন হয়ত আপনি অস্থিরবোধ করতে পারেন৷ সংকোচনগুলি যতক্ষণ সামলানো সহজ ততক্ষণ চলাফেরা করুন এবং নিজেকে ব্যস্ত রাখুন৷ নিজেকে তৈরী করে ব্যাগ গুছিয়ে নিন শিশুর আগমনের জন্য প্রস্তুত হয়ে নিন৷ হাঁটতে যান অল্প আহার করুন বন্ধুর সঙ্গে গল্প করুন৷ ক্রমশ যখন আপনার সংকোচনগুলি জোরালো হতে থাকে তখন ঐদিকে মনোযোগ দিন৷ আপনার শরীর এবং আপনার শিশুর কী হচ্ছে তা ভেবে দেখুন৷ নিজেকে চিন্তামুক্ত রাখুন এবং গভীরভাবে শ্বাসপ্রশ্বাস নিন৷ আপনার মনে হতে পারে যে বিছানায় শুয়ে থাকলে আপনি সবচেয়ে স্বচ্ছন্দ্যবোধ করবেন৷ কিন্তু আপনি নিজেকে যথাসম্ভব সোজা রাখলে তা আরো শীঘ্র প্রসবে সহায়ক হবে৷ আপনি বালিশে হেলান দিয়ে চেয়ারে বা স্টুলে বসে দেখতে পারেন বা একটা বালিশে হাঁটু গেড়ে বসে ভর দেওয়ার জন্য সামনের দিকে চেয়ার বা বিছানায় ওপর ঝুঁকে থাকতে পারেন আপনি চার হাত পায়ে ভর দিয়ে থাকতে পারেন বা একটা হাঁটু মুড়ে অন্য পা মেঝেতে রেখে বসতে পারেন৷ এতে আপনার পেলভিস অর্থাৎ শ্রোণী (আপনার তলপেটের দিকে বড় হাড়গুলি) খুলে যায় এবং আপনার শিশুর জন্য আরো জায়গা তৈরী করে৷ আপনার নিতম্ব সামনে পিছনে বা বৃত্তাকারে ঘোরানোর চেষ্টা করুন৷ এইভাবে শ্রোণীতে আপনার শিশুর সুবিধা হবে এবং আরাম বোধ হবে৷ এই ভাবে ঘোরাতে বা দোলাতে থাকুন সংকোচনের সময় সামনে ঝুঁকে যান আর এর মাঝে সোজা হয়ে নিন৷ বার বার অল্প বিরতি নিন বসে বা শুয়ে থাকুন৷ রাত্রে আপনার সংকোচন শুরু হলে যতক্ষণ সম্ভব বিছানায় থাকার ও নিরুদ্বিগ্ন হওয়ার চেষ্টা করুন৷ প্রত্যেকবার সংকোচনে আপনার প্রসব সেবিকাকে আপনার পিঠে মালিশ করে দিতে বলতে পারেন৷ এটা আপনাকে সংকোচন জোরালো ও দীর্ঘস্থায়ী হতে থাকার সাথে সাথে এগুলিকে সামলে নিতে সাহায্য করবে৷ প্রসববেদনা বাড়ার সাথে সাথে আরো ঘন ঘন ও দীর্ঘস্থায়ী সংকোচন হয়৷ এটা প্রসবের জোরালো সক্রিয় পর্ব৷ প্রবল প্রসববেদনায় সংকোচন আরো দ্রুত আপনার সার্ভিক্স খুলে দেয় আপনার শিশুর বেরিয়ে আসার পথ তৈরী করে দেয়৷ এই সংকোচনের সময় আপনি হয়ত কথা বলতে পারবেন না বা কারুর দিকে চোখ তুলে তাকাতে বা হাসতে পারবেন না৷ যা কাজ করছিলেন সেসব বন্ধ করে আপনার হাঁটু মুড়ে বা কুন্ডলী পাকিয়ে বসতে হবে এবং সংকোচন সামলানোর দিকে সম্পূর্ণ মনোনিবেশ করতে হবে৷ প্রত্যেকবারের সংকোচনে হয়ত আপনি ঘামে ভিজে দেবে এবং হয়ত সংকোচনের সময় আপনি সজোরে গোঙাতে থাকেন৷ প্রতি 3 থেকে 4 মিনিট অন্তর ঘন ঘন সংকোচন হতে পারে এবং এইগুলি 60 থেকে 90 সেকেন্ড চলতে পারে৷ সংকোচনগুলোর মাঝে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করার জন্য চলাফেরা করুন ঠান্ডা পানীয় খান এবং আপনার আশেপাশের লোকজনের সঙ্গে কথা বলুন৷ শরীরের লক্ষণগুলির প্রতি লক্ষ্য রাখুন এবং স্বাচ্ছন্দ্যের জন্য বিভিন্ন ভঙ্গীতে শুয়ে বসে দেখুন৷ বার বার প্রস্রাব করুন৷ সম্ভব হলে বেদনার উপশম করতে উষ্ণ পরিষ্কার সুরক্ষিত জলে গা ধুয়ে নিন বা উষ্ণ স্নান করে নিন৷ যখন আপনার শিশু নিচে দিকে নেমে যায় এবং বেরিয়ে আসার জন্য তৈরী তখন আপনার সংকোচনগুলি অন্যরকম মনে হবে৷ আপনার পায়ের মাঝখানে আপনার শিশু মাথার চাপ অনুভব করতে পারবেন৷ প্রত্যেকবার সংকোচনে আপনার হয়ত 2 বা 3 বার ঠেলে দেওয়ার প্রবল ইচ্ছা হবে৷ আপনার শরীরের সঙ্গে মানিয়ে চলুন এবং প্রবল ইচ্ছা হলে ঠেলে দিন৷ প্রত্যেকবারের চাপে আপনার শিশু আরেকটু নিচে নেমে আসবে৷ এই চাপ দেওয়ার সময় বেশ কয়েক বার ছোট ছোট শ্বাস প্রশ্বাস নেওয়ার চেষ্টা করুন শ্বাস আটকে রাখবেন না৷ সংকোচন শেষে হয়ত মনে হবে আপনার শিশু আবার সামান্য উঠে গিয়েছে৷ চিন্তা করবেন না৷ প্রত্যেকবার আপনার শিশু যদি খুব সামান্য নিচে নেমে যায় তাহলেও ঠিক আছে৷ যখন আপনার শিশুর মাথাটা অনেকটা নেমে যায় তখন হয়ত আপনি গরম জ্বালামত অনুভব করবেন৷ এর কারণ আপনার শিশুর মাথার চারিপাশে আপনার যোনির মুখ প্রসারিত হয়৷ আপনার সেবিকা যখন আপনার শিশুর মাথাটা দেখতে পাবেন তখন আপনাকে জানিয়ে দেবেন৷ গতি মন্থর করতে আপনার হয়ত এই সময় চাপ বা ঠেলা দেওয়া বন্ধ রাখতে হবে৷ এর পরের 2 বা 3 বার সংকোচনে ছোট ছোট শ্বাস প্রশ্বাস নিন৷ এইভাবে ধীরে ধীরে এবং আলতোভাবে আপনার শিশুর বেরিয়ে আসা নিশ্চিত করা যায় এবং আপনার ত্বক ছিঁড়ে যায় না৷ তোমার বাচ্চা হয়তো জন্ম নেওয়ার জন্য তৈরি হচ্ছে বেশির ভাগ বাচ্চাই এই সময় নাগাদ মাথা নিচে করে ফেলে হয়ত খেয়াল করবে যে বাচ্চা তোমার তলপেটে নেমে এসেছে এর ফলে নিঃশ্বাস নিতে সুবিধা হয় ঠিকই কিন্তু এর দরুণ তোমাকে আরো বেশি বার প্রস্রাবও করতে হয় তোমার দু পায়ের মাঝখানের জায়গায় হয়তো ফোলা লাগতে পারে যেখানে তোমার বাচ্চার মাথা অনুভব করতে পারবে ফোলা কমানোর জন্য যখনই পারবে বালিশে পা তুলে শুয়ে বিশ্রাম নেবে এতদিনে তোমার বাচ্চার শরীরের ভেতরের সব অঙ্গপ্রত্যঙ্গ পুরোপুরি তৈরি হয়ে গেছে তোমার ভেতরে ও তোমার গর্ভের মধ্যের তরলটা খাচ্ছে আর আবার সেটাকে বার করে দিচ্ছে ওর ফুসফুসগুলো পুরো তৈরি হয়ে গেছে এবং ওর প্রথম শ্বাস নেওয়া থেকেই সেগুলো কাজ করতে শুরু করবে রোজ বিশ্রাম নিতে এবং যে বাচ্চা তোমার মধ্যে বড় হচ্ছে তার কথা চিন্তা করতে চেষ্টা কোরো খুব তাড়াতাড়িই তুমি তাকে দেখবে তোমার বাচ্চা তোমার গলা শুনতে পায় এবং তুমি যখন তার সঙ্গে প্রথমবার কথা বলবে তখন সে তোমায় চিনতে পারবে তুমি হয়তো বড় মাপের নড়াচড়া কিছুটা কম অনুভব করবে কারণ তোমার গর্ভের ভেতরের জায়গাটা এখন ওর জন্য বেশ ছোট কিন্তু তবুও তোমার বাচ্চার নিয়মিত পা ছোঁড়া বুঝতে পারা উচিত যদি নিশ্চিত না হও খাওয়দাওয়ার পরে চুপ করে বসে লক্ষ্য করো ও কত ঘনঘন পা ছোঁড়ে যদি অনেকবার পা ছোঁড়া বুঝতে না পারো তাহলে তোমার স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে দেখা করো এটা যদি আপনার প্রথম সন্তান হয় তাহলে আপনার প্রসব বেদনা হচ্ছে কিনা তা হয়ত নিশ্চিত বুঝতে পারবেন না৷ যদি আপনি আগে মা হয়ে থাকেন তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন কারণ গতবার কেমন অনুভব করেছিলেন তা আপনার মনে থাকবে আপনার হয়ত সংকোচনের অভ্যাস চলবে৷ আপনার গর্ভাবস্থায় এগুলি অনবরত আসে যায়৷ তবে আপনার প্রসব বেদনা হচ্ছে কিনা বা এখন আপনার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়া উচিত কিনা যদি তা নিয়ে আপনি দ্বিধাগ্রস্ত হন তাহলে এই প্রশ্নগুলির উত্তর দিয়ে আপনার বুঝতে সুবিধা হবে৷ আপনার কোমরে ব্যথা বা পেটের নিচের দিকে ব্যথা হচ্ছে কী আপনার কী খিঁচের মত অনুভূতি হচ্ছে যেমন মাসিক স্রাব শুরু হওয়ার সময় হয় আপনার যোনি দিয়ে খয়েরি বা রক্তেরছোপ লাগা জেলির মত আঠালো তরল বার হচ্ছে কী আপনার সংকোচনগুলি কী ক্রমশ দীর্ঘস্থায়ী ও জোরালো হয়ে উঠছে সংকোচনে মাসিক স্রাবের মত বেদনা হয়৷ শুরুতে এইগুলি আসে আর যায়৷ যখন এইগুলি নিয়মিত হতে থাকে তখন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যান৷ আপনার জল ভেঙেছে কী আপনার গর্ভের শিশু তরল পদার্থে ভরা একটা থলিতে ভাসছে৷ যদি এই থলি ভেঙে যায় তরল চুঁইয়ে পড়ে বা প্রবলভাবে বেরিয়ে আসে তাহলে আপনার স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যাওয়া উচিত৷ আপনার শিশুর বাইরে আসার সময় হয়েছে আপনার এগুলোর মধ্যে থেকে কোনো লক্ষণ দেখা গেলে তার মানে আপনার প্রসব শুরু হয়েছে৷ জন্মদানের উদ্দেশ্যে আপনার শরীর তৈরী হয়েছে৷ প্রবের সময় এটা প্রসারিত হবে এবং খুলে যাবে৷ প্রথমে আপনার সার্ভিক্স (জরায়ুর মুখ) ছোট এবং নরম হতে হবে৷ আপনার নাক স্পর্শ করে দেখুন এটা শক্ত৷ এবার আপনার ঠোঁট দুটি স্পর্শ করে দেখুন এটা নরম ও প্রসারিত করা যায়৷ আপনার সার্ভিক্স প্রথমে ঠিক আপনার নাকের মত শক্ত থাকে৷ প্রসবের শুরুতে আপনার ঠোঁটের মত নরম ও প্রসারিত হয়ে যায়৷ এর পর আপনার সার্ভিক্স খুলতে ও বড় হতে শুরু করবে৷ আপনি হয়ত শুরুতে এটা লক্ষ্য করবেন না৷ হয়ত আপনার জরায়ু খুব আলতোভাবে সঙ্কুচিত হচ্ছে৷ এটা হয়ত আপনার মাসিক স্রাবের খিঁচের মত মনে হতে পারে৷ সময়ের সঙ্গে আপনার সংকোচনগুলো ক্রমশ যন্ত্রণাদায়ক হয়ে উঠবে৷ এইগুলি নিয়মিত হতে থাকবে৷ প্রত্যেকের প্রসব বেদনা আলাদা রকমের হয়৷ তবে সাধারণত প্রথমদিকের সংকোচনগুলি ছোট ছোট হয় এবং 5 মিনিটের ব্যবধান থাকে হয়ত এইগুলি 30 বা 40 সেকেন্ড থাকে৷ এইগুলির জন্য আপনার তখনও বিশেষ অসুবিধা হবে না৷ কয়েকজন মহিলার প্রসবের শুরুতে বেদনা শুরু হয়ে বন্ধ হয়ে যায়৷ অন্যদের ক্ষেত্রে এটা ক্রমশ বেড়ে সম্পূর্ণ প্রসববেদনায় পরিণত হয় যা শিশুর জন্ম না হওয়া পর্যন্ত ক্রমশ জোরালো হতে থাকে৷ আপনার প্রথম সন্তানের সময় প্রায় 8 ঘন্টা প্রসব বেদনা হতে পারে৷ তবে তা আরো অনেক কম বা অনেক বেশি হতে পারে৷ তবে সম্ভবত 18 ঘন্টার বেশি চলবে না৷ একবার সার্ভিক্স (আপনার জরায়ুর মুখ) সম্পূর্ণ খুলে গেলে আপনার শিশু বেরিয়ে আসার আগে ঠেলা দিতে 1 বা 2 ঘন্টা লাগতে পারে৷ যদি আপনি এর আগে সন্তানের জন্ম দিয়ে থাকেন তাহলে সম্ভবত এইবার দ্রুত প্রসব হবে৷ সচরাচর প্রায় 5 ঘন্টা লাগে৷ 12 ঘন্টার বেশি সময় লাগার খুব কম সম্ভাবনা থাকে৷ আপনার হয়ত শিশুকে ঠেলে বার করতে মাত্র 10 মিনিট মত সময় লাগবে৷ প্রত্যেকটি প্রসব ভিন্ন হয় তাই আপনার আগে এই অভিজ্ঞতা হয়ে থাকলেও আপনি হয়ত এইবারের প্রসব কত তাড়াতাড়ি বা দেরীতে হচ্ছে তা দেখে অবাক হতে পারেন যতক্ষণ পারবেন প্রসব বেদনার সময় সোজা থাকুন এবং চলাফেরা করুন কারণ এটা সব কিছু আরো তাড়াতাড়ি হতে সাহায্য করতে পারে৷ আপনার শিশুর প্রসবের পরে আপনার শরীর গর্ভফুল অর্থাৎ প্ল্যাসেন্টা ঠেলে বার করে দেয়৷ এতে প্রায় 5 থেকে 15 মিনিট সময় লাগে৷ তবে 1 ঘন্টা পর্যন্ত সময়ও লাগতে পারে৷ খুব বিরল ক্ষেত্রে খুব দ্রুত প্রসব হতে পারে৷ আপনি আগে যদি মা হয়ে থাকেন তাহলে এই সম্ভাবনা বেশি থাকে৷ আপনার সহজাত প্রবৃত্তির উপর নির্ভর করা জরুরি যাতে আপনার শরীর কী সঙ্কেত দিচ্ছে আপনি তা বুঝতে পারেন তাহলে আপনি সময়মত সাহায্য চাইতে পারেন৷ কয়েকটা শিশু আর অপেক্ষা করতে চায় না প্রসবের জন্য পরিকল্পনা বানাও তোমার বাচ্চা এখন চোখ খুলতে পারে এবং আলোর দিকে মাথা ঘোরাতে পারে এমন কি গর্ভের ভেতর থেকেও এখন ও শব্দ শুনতে পায় এবং জোরালো আওয়াজ শুনলে হয়তো পেটের মধ্যে লাফাতে আর পা ছুঁড়তে পারে আর তুমি ওকে গান গেয়ে শোনালে বা ওর সঙ্গে কথা বললে শান্ত হয়ে যেতে পারে শিগগিরিই ও তোমার ভেতরে মাথা নিচের দিকে করে ঘুরে যাবেওর মাথা প্রথমে বেরোবে তাই ও উলটে যায় প্রসবের জন্য তৈরি হয় পেট যত বড় হবে তত অস্বস্তি হবে এবং ঘুমোতে অসুবিধে হবে পাশ ফিরে শোও আর দু পায়ের মাঝখানে একটা বালিশ রাখো যার উপরে পেটের ভারটা রাখা যায় তোমার হয়তো কোমরে ব্যথা শুরু হতে পারে কারণ কোমর আর তলপেটের মধ্যেকার স্থিতিস্থাপক কোষগুলো হয়তো ঢিলে হচ্ছে এটা হল তোমার শরীরের প্রসবের জন্য তৈরি হওয়া হাতে আর হাঁটুতে ভর দিয়ে হাঁটু গেড়ে বসলে উপকার হতে পারে ব্যথা উঠলে দাই বা ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য তোমায় একটা পরিকল্পনা বানাতে হবে ওখানে কী করে যাবে সেটা ঠিক করো এবং কথা বলে দেখো কোনো বন্ধু বা আত্মীয় সাহায্য করবে কি না তোমার বাড়ির লোকের সঙ্গে কথা বলো এবং নিশ্চিত করো যে তোমায় কোথায় নিয়ে যেতে হবে সেটা যেন তারা জানে গর্ভাবস্থার শেষের দিকে স্বাস্থ্য কেন্দ্রে যেও যাতে নার্স বা স্বাস্থ্যকর্মী তোমায় ও সেই সঙ্গে বাচ্চাকেও পরীক্ষা করে দেখতে পারেওরা তোমায় বলতে পারবে প্রসবের জন্য তোমার কী কী লাগবে এবং ব্যথা উঠলে কখন ক্লিনিকে যেতে হবে আপনার পা দুটি কী ফুলে গিয়েছে বিশেষ করে গর্ভাবস্থার শেষ 3 মাসে এমন প্রায়ই দেখা যায়৷ উষ্ণ আবহাওয়ার ফলে এই সমস্যা আরো বেড়ে যায়৷ গর্ভাবস্থায় আপনার শরীর বাড়তি তরল তৈরী করে এবং কখনও কখনও অতিরিক্ত তরল জমা করে রাখে৷ দিন এগিয়ে চলার সাথে সাথে আপনার পা এবং পায়ের পাতায় এই তরল জমা হওয়ার প্রবণতা দেখা যায়৷ আপনি হয়ত দেখবেন ক্রমশ এই ফোলাভাব বাড়তে থাকে৷ বিছানায় শুয়ে থাকার পরে সকালের দিকে এই সমস্যা একটু কম থাকে৷ ফোলাভাবের উপশম করতে দিনের বেলায় কিছুক্ষণ পা উপরদিকে তুলে রেখে বিশ্রাম করার চেষ্টা করুন৷ অনেকক্ষণ ধরে একভাবে দাঁড়িয়ে থাকলে ফোলাভাব বেড়ে যেতে পারে তাই কয়েকটা কাজ বসে করার চেষ্টা করুন৷ গর্ভাবস্থার শেষে আপনার হাত দুটিও ক্রমশ ফুলে উঠতে পারে৷ হয়ত আপনার আংটি আঁটো মনে হতে পারে৷ ঐগুলি খুলে গলায় একটা চেনে পরে নিন৷ বিপদ সঙ্কেত হঠাৎ যদি আপনার ফোলাভাব হয় বা চোখে অস্পষ্ট দেখেন তাহলে শীঘ্র ডাক্তার দেখানো উচিত৷ এটা গুরুতর অবস্থার লক্ষণ হতে পারে যার ফলে ফিটের রোগ হতে পারে শিশুকে গর্ভে বড় করে তুলতে গিয়ে আপনি ক্লান্ত হয়ে পড়তে পারেন৷ যতবার সম্ভব বিশ্রাম নিন৷ আপনার বস এবং আপনার পরিবারের লোকেদের বুঝিয়ে বলুন যে আপনার শিশুকে বড় করে তোলার জন্য আপনার শরীর খুব পরিশ্রম করছে৷ বাড়িতে শুধু সবচেয়ে জরুরি কাজগুলি করুন এবং আপনার পরিবারের কাছ থেকে সাহায্য চেয়ে নিন৷ গর্ভাবস্থায় আপনি সারা দিনে আরো ছোট ছোট বিরতি নিতে পারেন কিনা আপনার নিয়োগকর্তাকে জিজ্ঞাসা করুন৷ সম্ভব হলে গর্ভাবস্থায় আপনি আপনার কাজের সময় কম করে দিতেও বলতে পারেন৷ আপনার শরীরের ভিতরে যেমন য়েমন আপনার সন্তান বড় হয়ে উঠবে তার খাবারের প্রয়োজন বাড়তে থাকবে৷ আপনার পেট বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ধীরে ধীরে আপনার খাবারের পরিমাণ বাড়াতে থাকুন৷ প্রত্যেক আহারে একমুঠো বেশি খাবার খাবেন৷ সারা দিনে বার বার অল্প করে খাবার খেতে থাকুন৷ কাজে যাওয়ার সময় আপনার সাথে কিছু খাবার নিন৷ আপনার শিশু ক্রমশ বেড়ে ওঠার ফলে সে আপনার মূত্রথলিতে যেখানে আপনার প্রস্রাব জমা হয় চাপ দিতে শুরু করবে৷ ফলে আপনার বার বার প্রস্রাব পাবে হয়ত তাতে আপনার ঘুমে ব্যাঘাত ঘটবে৷ শুতে যাওয়ার এক ঘন্টা আগে থেকে কোনো তরল না খাওয়ার চেষ্টা করুন৷ এতে সুবিধা হতে পারে৷ তবে সারা দিনে অবশ্যই প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খাবেন৷ আপনার পায়ে খিঁচ ধরতে পারে৷ আপনার পায়ের মাংসপেশীগুলি শিশুর ক্রমশ বেড়ে ওঠা ওজন বহন করছে৷ ফলে আপনার পায়ে ব্যথা হতে পারে বা ক্লান্ত হয়ে যেতে পারে৷ খিঁচের ফলে যদি আপনার ঘুম ভেঙে যায় তাহলে মাংসপেশী টান টান করার চেষ্টা করুন৷ পা সোজা করে গোড়ালি ও পায়ের আঙ্গুলগুলি বাঁকান৷ আপনার খিঁচ ধরা মাংসপেশীগুলি মালিশও করতে পারেন৷ চেষ্টা করবেন যাতে অকেনক্ষণ ধরে দাঁড়িয়ে না থাকতে হয় বা পা দুটো ভাঁজ করে বসতে না হয়৷ হাঁটু দুটির মাঝখানে বালিশ বা কাপড়ের প্যাড রেখে বাঁ পাশ ফিরে ঘুমোন৷ এটা আপনাকে রাতে আরো স্বাচ্ছন্দ্য দিতে সাহায্য করতে পারে সংকোচনের অভ্যাস শরীরের প্রসবের প্রস্তুতিপর্ব বলা যায়৷ আপনার গর্ভাবস্থার প্রায় 2 মাস সময় থেকে আপনার জরায়ু ধীরে ধীরে এর অভ্যাস করছে৷ আপনার জরায়ু যত বড় হতে থাকে ততই এই সংকোচনের সময় আপনি এই শক্ত টানাটানভাব অনুভব করেন৷ প্রতিবারের এই টানটানভাব সাধারণত প্রায় 30 সেকেন্ড থাকে৷ যদি আপনি টানটানভাব অনুভব করেন তাহলে আবরণহীন পেটের উপর হাত রাখুন৷ আপনার জরায়ু কত শক্ত হয়ে উঠেছে তা বুঝতে পারবেন৷ কারণ এটা মাংসপেশী আর মাংসপেশীতে টান পড়লে তা শক্ত হয়ে ওঠে৷ সংকোচনের এই অভ্যাস বন্ধ হয়ে গেলে এটা আবার নরম হয়ে যায়৷ গর্ভাবস্থার পরের দিকে সংকোচনের এই অভ্যাস বেশ ভালোভাবে অনুভব করা যায়৷ আপনার হয়ত মনে হবে আপনার প্রসব বেদনা উঠছে৷ তাই কী করে বুঝবেন এগুলি কতক্ষণ ধরে থাকে সাধারণত সংকোচনের এই অভ্যাস কিছুক্ষণ মাত্র চলে৷ তারপর সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে যায়৷ তাই ঘন্টাখানেক অপেক্ষা করে দেখুন এটা বন্ধ হয়েছে কিনা৷ প্রায়ই আপনি উঠে চলাফেরা করতে শুরু করলে সংকোচনের অভ্যাস বন্ধ হয়ে যায়৷ তাই ঘরের কাজকর্ম করে দেখুন বা অল্প হেঁটে দেখুন এটা বন্ধ হচ্ছে কিনা৷ এগুলি কী আরো জোরালো হয়ে উঠছে সত্যিকার সংকোচন আরো বেশিক্ষণ ধরে থাকে ও জোরালো হয়ে ওঠে৷ যদি আপনার এই সংকোচন একই রকম থাকে ও জোরালো না হয়ে ওঠে তাহলে খুব সম্ভব এইগুলি সংকোচনের অভ্যাস৷ এগুলি কী আরো ঘন ঘন হচ্ছে প্রসব বেদনা উঠলে সংকোচনের মধ্যেকার সময়ের ব্যবধান ক্রমশ কম হয়ে যায়৷ তাই এইগুলি হয়ত প্রতি 20 মিনিটে হবে তারপর প্রতি 15 তারপর প্রতি 10 তারপর প্রতি 5 মিনিটে শুরু হয়ে যায়৷ সংকোচনের অভ্যাসে এই সময়ের ব্যবধান সাধারণত একই থাকে৷ বাচ্চাকে গান গেয়ে শোনাও ও তোমার কথা শুনতে পায় গর্ভের মধ্যে তোমার বাচ্চা এখন নিয়মিত সময় বাদে বাদে জাগে ও ঘুমোয় ও এখন চোখ খুলতে আর বন্ধ করতে পারে আর আঙুল কিংবা বুড়ো আঙুল চুষতে পারে এতে ওর চোষার পেশিগুলো জোরালো হয় যাতে জন্মানোর সঙ্গে সঙ্গেই ও দুধ খাওয়ার মত যথেষ্ট শক্তিশালী হতে পারে ওর মস্তিষ্ক এখন তাড়াতাড়ি বাড়ছে ও এখন শব্দ শুনে সাড়া দিতে পারে প্রথমে ও শুধু তোমার শরীরের শব্দই শুনতে পাবে যেমন তোমার বুকের ধকধক শব্দ কিন্তু আস্তে আস্তে ও তোমার শরীরের বাইরের শব্দও শুনতে শুরু করবে ওকে গান গেয়ে শোনাও যাতে ও তোমার গলা শুনতে পায় হয়তো মনে হবে তোমার গর্ভ তোমার পাঁজরের কাছে উঠে এসেছে যার দরুন তোমার নিঃশ্বাস নিতে হাঁসফাঁস লাগবে তোমার বাড়ন্ত বাচ্চা পাকস্থলীর উপর চাপ দেওয়ায় খেতে অসুবিধে হতে পারে বারে বারে অল্প অল্প করে খাও আর বড় খাওয়ার মাঝে মাঝে হালকা খাবার খেতে থাকো তোমার বাচ্চার সঙ্গে সঙ্গে তোমার গর্ভও বাড়ছে তোমার পেটের চামড়া টান টান হবে আর তার দরুন চুলকানি হতে পারে তোমার পেট তলপেট পাছা ও বুকে লাল লাল ডোরা চোখে পড়তে পারে এগুলো চামড়ায় টান পড়ার জন্য হয় এবং প্রসবের পরে অনেক হালকা হয়ে যাবে তোমার পায়ে খিঁচ ধরতে পারে বা শিরা ফুলতে পারে তোমার বুক এখন আগের চেয়ে ভরাট ও ভারি হয়েছে তার কারণ ওরা এখন তোমার বাচ্চার দুধ তৈরি করার জন্য প্রস্তুত হচ্ছে কোষ্ঠ হওয়ার মানে আপনার মলত্যাগ করতে কষ্ট হচ্ছে বা মলত্যাগ করতে পারছেন না৷ বা হয়ত আপনার পেট ভালোমত পরিষ্কার হচ্ছে না৷ এছাড়া আপনার মল অস্বাভাবিক শক্ত ঢেলামত বড় বা ছোট হতে পারে৷ গর্ভাবস্থায় অনেক মহিলা কোষ্ঠকাঠিন্যে ভোগেন৷ তার নানা কারণ থাকে আপনার শিশু আকারে যত বড় হতে থাকে আপনার জরায়ু শ্রোণীর উপরে তত চাপ দেয়৷ এর ফলে কোষ্ঠকাঠিন্যের সম্ভাবনা বেড়ে যায়৷ গর্ভাবস্থার হরমোনের ফলেও শরীরের মধ্যে দিয়ে খাদ্যদ্রব্যের গতি মন্থর হয়ে যেতে পারে৷ ব্যায়ামের অভাবেও আপনার হজমক্ষমতা মন্থর হয়ে যেতে পারে৷ আপনি আরো বেশি পরিমাণে ফল এবং সব্জি খেয়ে আপনার শরীরকে সাহায্য করতে পারেন৷ গাঢ় সবুজ শাক সব্জি যেমন পালং শাক এবং মেথি শাক খেয়ে দেখুন এছাড়া পেয়ারা তারো বা কচু এবং মাশরুম খেয়ে দেখতে পারেন৷ শাক সব্জি এবং ফল তন্তুসমৃদ্ধ হয় যা আপনার মলকে নরম করে দিতে এবং সহজে মলত্যাগ করতে সাহায্য করবে৷ প্রচুর পরিমাণে পরিষ্কার ফোটানো জল খাবেন৷ এতেও কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করা যায়৷ প্রতি দিন আয়রনের ট্যাবলেট খাওয়া অত্যন্ত জরুরি৷ এইগুলির ফলে কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে৷ তবে ট্যাবলেট খাওয়া বন্ধ করবেন না কারণ এইগুলি আপনার এবং আপনার সন্তানের স্বাস্থ্যের জন্য খুব জরুরি৷ বরং আপনার ডাক্তার বা স্বাস্থ্য কর্মীর কাছ থেকে অন্য ধরণের আয়রন ট্যাবলেটে চেয়ে নিন এবং বেশি করে পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খান ভালো করে খাবার খান এবং প্রতি দিন আপনার কিছুটা ব্যায়াম হচ্ছে কিনা সে ব্যাপারে লক্ষ্য রাখুন৷ কখনো কখনো সন্তান প্রসবের সবচেয়ে নিরাপদ উপায় হল অপারেশন৷ তবে শুধু হাসপাতালে আপনি সিজারিয়ান করাতে পারেন৷ আপনি যদি 1টির বেশি সন্তানকে জন্ম দেন বা যদি জন্মের সময় আপনার সন্তানের ভালো অবস্থান না থাকে তাহলে হয়ত অপারেশনের প্রয়োজন হবে৷ যদি আপনার 12 ঘন্টার বেশি সময় ধরে প্রসববেদনা চলে তাহলে হয়ত আপনার সন্তানের জন্মে সাহায্যের জন্য অপারেশনের প্রয়োজন হবে৷ যদি আপনার বাড়িতে প্রসব বেদনা ওঠে তাহলে তখন হাসপাতালে যেতে হবে যাতে কোনো সমস্যা আছে কিনা জানা যায়৷ যদি প্রসবকালে আপনার রক্তপাত হয় তাহলে খুব শিগগীর হয়ত অপারেশন করানোর প্রয়োজন হবে৷ যদি এর আগে সন্তানের ক্ষেত্রে আপনি অপারেশন করিয়ে থাকেন তাহলে এই সন্তানের সময়ও আপনার অপারেশন করার প্রয়োজন হতে পারে৷ এই ক্ষেত্রে এই শিশু যাতে হাসপাতালে জন্মায় তার পরিকল্পনা অবশ্যই করে নিন৷ অপারেশনের সময় হয়ত আপনি ঘুমাবেন বা আপনি যাতে বেদনা অনুভব না করেন সেইজন্য আপনাকে ইনজেকশন দেওয়া হতে পারে৷ আপনার পেট কাটা হবে৷ ডাক্তার আপনার সন্তান প্রসব করিয়ে আবার আপনার পেট সেলাই করে দেবেন৷ জন্মের পরেই অথবা যদি আপনি অপারেশনের জন্য ঘুমিয়ে থাকেন তাহলে আপনি জেগে ওঠার পরে আপনার শিশুসন্তানকে দেখতে পাবেন৷ অপারেশনের পরে যতদিন না আপনার ক্ষতস্থান সেরে ওঠে ততদিন ধরে আপনাকে পর্যবেক্ষণে রাখার প্রয়োজন হবে৷ স্বাভাবিক প্রসবের মতই কয়েক সপ্তাহ ধরে আপনার যোনি দিয়ে রক্তপাত হবে৷ 9 মাসে বেশির ভাগ শিশু জন্মায়৷ তবে কখনো কখনো যথাসময়ের আগে প্রসব হয়ে যায়৷ যথাসময়ের আগে প্রসববেদনা শুরু হলে আপনাকে অবশ্যই হাসপাতালে যেতে হবে৷ জন্মের সময় আপনার শিশুর বাড়তি যত্নের প্রয়োজন হবে৷ যদি আপনার শিশু ছোট ও দূর্বল হয় তাহলে যতদিন না সে সবল হয়ে উঠছে ততদিন হয়ত আপনাকে হাসপাতালে থাকতে হবে৷ আপনার শিশুকে সবল করে তোলার জন্য অন্যতম যে কাজটি আপনি করতে পারেন তা হল তাকে বুকের দুধ খাওয়ানো৷ আপনার প্রথম বুকের দুধ খুব ঘন ক্রিমের মত এবং পুষ্টিতে ভরপুর হয়৷ সেটা ফেলে দেবেন না৷ আপনার শিশুকে এই অমূল্য উপহার দিন৷ যথাসময়ের আগে জন্ম হলে সেই শিশুর হয়ত নিজে নিজে বুকের দুধ খাওয়ার মত শক্তি থাকে না৷ তাকে খাওয়ানোর জন্য প্রথমে একটা পরিষ্কার স্টিলের বাটিতে আপনার বুকের দুধ বার করে নিন৷ তার আগে ঐ বাটি জলে ফুটিয়ে ঠান্ডা করে নিন৷ তার ফলে কোনো জীবাণু থাকলে ধ্বংস হয়ে যাবে৷ তারপর ঐ বাটিতে আপনার বুকের দুধ টিপে বার করে নিয়ে আপনার শিশুকে খাওয়ান৷ বোতলের বদলে একটা বাটি ও ঝিনুক ব্যবহার করুন কারণ বোতল পরিষ্কার করা আরো কঠিন এবং এতে সংক্রমণের আশঙ্কা কম থাকবে৷ আপনার শিশুকে কোলে তুলে নিন৷ আলতোভাবে চামচ বা ঝিনুকটা কাত করে ধরুন যাতে তা ওর নিচের ঠোঁট স্পর্শ করে এবং মুখে একটু করে দুধ ঢোকে৷ শীঘ্রই ও নিজে দুধ চেটে নিতে শিখে যাবে৷ এছাড়া আপনার শিশুর প্রচুর উষ্ণতার প্রয়োজন হবে৷ যখন সম্ভব তাকে আপনার আবরণবিহীন বুকে শক্ত করে ধরে রাখুন যাতে ও আপনার শরীরের উষ্ণতা পায়৷ আপনার পোশাকের নিচে আপনার শিশুকে আপনার ত্বক স্পর্শ করে রাখতে পারেন লক্ষ্য রাখুন ওর মুখ ও নাক যেন ঢেকে না যায়৷ ওড়না বা শাড়ি দিয়ে দোলনামত তৈরী করে পরে নিলে ওকে ভালোমত ধরে রাখা নিশ্চিত করা যায়৷ এইভাবে ও স্বচ্ছন্দ্যবোধ করবে আপনারা পরস্পর ঘনিষ্ঠ বোধ করবেন এবং এটা তাকে বেড়ে ওঠায় সাহায্য করবে৷ এটা আপনাকে বুকের দুধ তৈরী করতেও সাহায্য করবে তুমি কী তোমার বাচ্চার নড়াচড়া টের পাচ্ছ এ খন তোমার পেটের মধ্যে তোমার বাচ্চাকে একটা ছোট্ট সদ্য জন্মানো বাচ্চার মত দেখাচ্ছে ওর চোখ ভুরু আর চোখের পাতা তৈরি হয়ে গেছে আর মাড়ির তলায় দাঁত বাড়ছে ওর জিভে স্বাদের কুঁড়িগুলো তৈরি হচ্ছে প্রথমবার খাওয়া থেকেই ও তোমার দুধের স্বাদ বুঝতে পারবে একটা সাদা ক্রীমের মত জিনিসে ওর চামড়া ঢেকে থাকে এটা তোমার বাচ্চার চামড়াকে রক্ষা করে এবং প্রসবের সময় সাহায্য করে মোটামুটি এইরকম সময়ে তুমি হয়তো তোমার বাচ্চার নড়াচড়া টের পেতে শুরু করবে মনে হবে তোমার ভেতরে ছোট্ট বুদবুদ উঠছে প্রথমে হয়তো ঠিক বুঝতে পারবে না কী হচ্ছে আস্তে আস্তে নড়াচড়াগুলো আরো জোরালো হবে আর তখন একেবারে নিশ্চিত করে বুঝতে পারবে যে ওটা তোমার বাচ্চারই পা ছোঁড়া দারুণ সময় সেটা তোমার এখন একটু নিঃশ্বাসের কষ্টও শুরু হতে পারে এবং নিজেকে নড়বড়ে লাগতে পারে এর কারণ তুমি বেশি ওজন বইছ এবং তোমার উঁচু হয়ে থাকা পেটের জন্য শরীরের ভার টলমল করছে তোমার হয়তো বেশি সাদা স্রাব হতে পারে এবং বারে বারে প্রস্রাব পেতে পারে দাঁত মাজার সময় রক্ত পড়লে বুঝবে পেটে বাচ্চা থাকার দরুন হরমোনগুলোর প্রভাবে তোমার মাড়ি ফুলছে ও ব্যথা করছে যার ফলে রক্ত পড়তে পারে রোজ ব্রাশ করো তবে হালকা ভাবে আপনার মূত্রথলির (যেখানে প্রস্রাব হওয়ার আগে আপনার প্রস্রাব জমা হয়) ঠিক উপরে আপনার গর্ভের শিশু বেড়ে উঠছে৷ শিশুর ওজন মূত্রথলিতে চাপ সৃষ্টি করে ফলে আপনার বার বার প্রস্রাব করার দরকার হয়৷ এটা গর্ভাবস্থার সুপরিচিত লক্ষণ৷ আপনি যতটা পরিমাণ পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খাচ্ছেন তা কম করবেন না৷ আপনার সুস্থ থাকার জন্য এটা প্রয়োজন৷ যদি আপনার প্রস্রাব করতে গিয়ে বেদনা হয় তাহলে হয়ত আপনার সংক্রমণ হয়েছে৷ এর ফলে আপনার জ্বর হতে পারে বা হঠাৎ ঠান্ডা ও গরম বোধ করতে পারেন৷ সংক্রমণের অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে আছে আপনার প্রস্রাবে রক্ত পড়া অসুস্থ বোধ করা এবং কাঁপুনি৷ যৌনসঙ্গমও যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে৷ চিকিৎসা করানো খুব জরুরি তাই ডাক্তারকে দেখিয়ে নিন৷ আপনার প্রস্রাবের জীবাণুর ফলে আপনার কিডনির সংক্রমণ হতে পারে যা আপনার এবং আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হতে পারে৷ এইভাবে প্রস্রাবের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায় টয়লেটের পর আপনার স্ত্রীযোনি থেকে দূর পর্যন্ত সামনে থেকে পিছনদিকে নিজেকে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন৷ এর ফলে আপনার মলদ্বার থেকে ব্যাক্টেরিয়া আপনার স্ত্রীযোনিকে সংক্রামিত করতে পারবে না৷ প্রচুর পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খান৷ এটা সংক্রমণকে শরীর থেকে জলের সঙ্গে বার করে দিতে সাহায্য করে৷ যদি প্রস্রাব পায় তাহলে যান এটাকে আটকে রাখবেন না৷ কোনোরকম জীবাণু দূর করতে যৌনসঙ্গমের পরে যদি সম্ভব হয় সবসময় প্রস্রাব করে নেবেন৷ আপনার মূত্রথলির (যেখানে প্রস্রাব হওয়ার আগে আপনার প্রস্রাব জমা হয়) ঠিক উপরে আপনার গর্ভের শিশু বেড়ে উঠছে৷ শিশুর ওজন মূত্রথলিতে চাপ সৃষ্টি করে ফলে আপনার বার বার প্রস্রাব করার দরকার হয়৷ এটা গর্ভাবস্থার সুপরিচিত লক্ষণ৷ আপনি যতটা পরিমাণ পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খাচ্ছেন তা কম করবেন না৷ আপনার সুস্থ থাকার জন্য এটা প্রয়োজন৷ যদি আপনার প্রস্রাব করতে গিয়ে বেদনা হয় তাহলে হয়ত আপনার সংক্রমণ হয়েছে৷ এর ফলে আপনার জ্বর হতে পারে বা হঠাৎ ঠান্ডা ও গরম বোধ করতে পারেন৷ সংক্রমণের অন্যান্য লক্ষণের মধ্যে আছে আপনার প্রস্রাবে রক্ত পড়া অসুস্থ বোধ করা এবং কাঁপুনি৷ যৌনসঙ্গমও যন্ত্রণাদায়ক হতে পারে৷ চিকিৎসা করানো খুব জরুরি তাই ডাক্তারকে দেখিয়ে নিন৷ আপনার প্রস্রাবের জীবাণুর ফলে আপনার কিডনির সংক্রমণ হতে পারে যা আপনার এবং আপনার শিশুর স্বাস্থ্যের জন্য গুরুতর হতে পারে৷ এইভাবে প্রস্রাবের সংক্রমণ প্রতিরোধ করা যায় টয়লেটের পর আপনার স্ত্রীযোনি থেকে দূর পর্যন্ত সামনে থেকে পিছনদিকে নিজেকে ভালো করে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন৷ এর ফলে আপনার মলদ্বার থেকে ব্যাক্টেরিয়া আপনার স্ত্রীযোনিকে সংক্রামিত করতে পারবে না৷ প্রচুর পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খান৷ এটা সংক্রমণকে শরীর থেকে জলের সঙ্গে বার করে দিতে সাহায্য করে৷ যদি প্রস্রাব পায় তাহলে যান এটাকে আটকে রাখবেন না৷ কোনোরকম জীবাণু দূর করতে যৌনসঙ্গমের পরে যদি সম্ভব হয় সবসময় প্রস্রাব করে নেবেন৷ তোমার বাচ্চা এখন তোমার হাতের মত বড় ও বাড়ছে আর ওর সব অনুভূতিগুলোও তৈরি হচ্ছে জন্মানোর পরে ও দেখতে স্বাদ বুঝতে গন্ধ শুঁকতে আর শব্দ শুনতে পারবে তোমার বুক বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে দুধের বোঁটার চারদিকের গোল গাঢ় রঙের চামড়াও বাড়বে এই কালচে জায়গাটা তোমার বাচ্চার জন্মের পর তাকে বুক খুঁজে পেতে সাহায্য করে এবং বোঁটা মুখে পুরতে ও দুধ পেতে বাচ্চার সুবিধা হয় তুমি হয়তো খেয়াল করবে যে তোমার বুক খুব তাড়াতাড়ি বড় হচ্ছে ও অনেক ভারি লাগছে তোমার চামড়াও হয়তো পালটাচ্ছে তোমার মুখে কালো কালো ছোপ হতে পারে বা তোমার তলপেটে একটা লম্বা কালচে দাগ দেখা দিতে পারে রোদ লাগলে এগুলো আরো বাড়তে পারে তাই তোমার গা মাথা ঢেকে রাখো কিংবা ছায়ায় থাকো তোমার বাচ্চার জন্মের পর এগুলো মিলিয়ে যাবে গর্ভবতী হলে তোমার শরীরের গাঁটগুলো ঢিলে হয়ে যায় তাই ভারি জিনিস বয়ে বেড়ালে তোমার গায়ে ব্যথাবেদনা হতে পারে কিছু ওঠানোর সময় সাবধান হও অনেক বাজার করতে হলে ছোট ছোট ভাগে করো তোমার আরো বেশি বিশ্রাম দরকার হতে পারে রোজ দুপুরে বিশ্রাম নিতে চেষ্টা করো আর ক্লান্ত লাগলে তাড়াতাড়ি শুতে যাও বাচ্চা বড় করা বেশ খাটুনির কাজ গর্ভাবস্থায় আপনার শরীরে নানা পরিবর্তন ঘটে এবং এইসব পরিবর্তনগুলি দুশ্চিন্তার কারণ হওয়া উচিত কিনা তা মনে করাটা স্বাভাবিক৷ এটা স্বাভাবিক আপনি কী ক্লান্ত সকালে বমিভাব হয় বদহজম হচ্ছে বার বার প্রস্রাব করতে হচ্ছে আপনার ত্বকে কী পরিবর্তন হচ্ছে আপনার কী শ্বাসকষ্ট হয় গর্ভাবস্থায় স্বাগত এইগুলি বিপদ সঙ্কেত আপনার এর মধ্যে কোনোটি হলে ডাক্তার দেখান আপনার পেটে ব্যথা জ্বর হয় অস্পষ্ট দেখা এবং চোখের সামনে যদি ছোপ ছোপ দাগ ভেসে ওঠে আপনার যোনি থেকে তরল চুঁইয়ে পড়ে প্রস্রাব করতে যন্ত্রণা হয় যদি আপনার গর্ভাবস্থার 5 মাস হয়ে যায় এবং আপনার শিশুর লাথি মারা বন্ধ বা কম হয়ে যায় যদি আপনার প্রচুর রক্তপাত হয় বা রক্তপাতের সঙ্গে যন্ত্রণা হয়৷ গর্ভাবস্থায় আপনার রক্তে প্রচুর পরিমাণে অতিরিক্ত আয়রনের প্রয়োজন হয়৷ এই আয়রন আপনার গর্ভের শিশুর বিকাশে সাহায্য করে যাতে অকালপ্রসব না হয় এবং সে সুস্থ হয়ে জন্মাতে পারে৷ প্রসবকালে আপনার রক্তপাতের পরিমাণ কম করতেও এই আয়রন সাহায্য করে৷ আপনি আয়রনে ভরপুর খাবার খেয়ে এই আয়রন পেতে পারেন৷ পর্যাপ্ত আয়রনের অভাব হলে আপনার শরীর যথেষ্ট অক্সিজেন পাবে না৷ একে আয়রনের অভাবজনিত রক্তাল্পতা বলা হয়৷ এর ফলে আপনি ক্লান্ত এবং দূর্বল অনুভব করবেন৷ প্রতি দিন প্রচুর পরিমাণে আয়রনসমৃদ্ধ খাবার খাওয়ার চেষ্টা করুন৷ অনেক আয়রনসমৃদ্ধ খাবার আছে ডিম বীন ডাল অঙ্কুরিত ছোলা মুর্গি মাছ এবং মাংস গুড় এবং সবুজ শাক সব্জি শুকনো ফল এবং বাদাম ছানা যথেষ্ট আয়রন পেতে এইসব খাবারের সংমিশ্রণ খাওয়ার চেষ্টা করুন৷ পাতি লেবু কমলালেবু এবং আমলকীর মত লেবুজাতীয় ফল খাবার থেকে আয়রন পেতে আপনার শরীরকে সাহায্য করে৷ সরকারি স্বাস্থ্য কেন্দ্র থেকে বিনামূল্যে আয়রনের ট্যাবলেটে চেয়ে নিন প্রতি দিন যখন এই ট্যাবলেটগুলি খান তখন তার সঙ্গে ফল বা ফলের রস খান এর সাহায্যে আপনার শরীর আরো বেশি করে আয়রন শুষে নিতে পারবে৷ চেষ্টা করুন যাতে খাবারের সঙ্গে বা ট্যাবলেট খাওয়ার সময় দুধ ছাড়া চা বা কফি না খেতে হয় কারণ এইসব পানীয়র জন্য শরীরের পক্ষে আয়রন শুষে নেওয়া মুস্কিল হয়৷ যে আহারের সময় আপনার ক্যালসিয়ামের ওষুধ নেন তার থেকে অন্য সময়ে আপনার আয়রনের ট্যাবলেট খান৷ গর্ভাবস্থায় যৌন সঙ্গমের ব্যাপারে আপনি কী চিন্তিত গর্ভাবস্থার আগের মতই আপনি যৌন সঙ্গম বজায় রাখতে পারেন৷ যৌন সঙ্গমের ফলে গর্ভপাত হয় না৷ তবে যদি আপনার পেটে যন্ত্রণা হয় রক্তপাত হয় বা আপনার এর আগের গর্ভাবস্থায় সমস্যা হয়ে থাকে তাহলে আগে আপনার ডাক্তার বা স্বাস্থ্য কর্মীর সঙ্গে কথা বলে নিন৷ সেক্ষেত্রে সন্তান প্রসবের আগে পর্যন্ত যৌন সঙ্গম না করা বেশি নিরাপদ হবে৷ আপনি হয়ত অস্বস্তিবোধ করবেন ও যৌনসঙ্গম করতে চাইবেন না৷ অনেক মহিলারই এমন মনে হয়৷ অন্যভাবে ভালোবাসা প্রকাশের চেষ্টা করুন৷ তার বদলে আদর সোহাগ করুন৷ আপনি কেমন বোধ করছেন তা আপনার স্বামীকে জানান৷ যদি আপনার আঠালো তরল নিঃসরণ হয় (স্রাব) বা চুলকানি থাকে তাহলে যৌন সঙ্গমের সময় কন্ডোম ব্যবহার করুন৷ এতে নিরাপদ থাকে যদি আপনি কোনোরকম নিঃসরণ দেখতে পান তাহলে যখন সম্ভব আপনার ডাক্তারের সঙ্গে দেখা করা উচিত৷ গর্ভাবস্থায় সবসময় কন্ডোম ব্যবহার করা শ্রেয়৷ এটা আপনাকে ও আপনার শিশুকে যৌন সঙ্গম এবং এইচআইভির ফলে সংক্রমণ থেকে সুরক্ষিত রাখবে৷ আপনার স্বাস্থ্য কেন্দ্র বিনামূল্যে আপনাকে এইগুলি দিতে পারে৷ সংক্রমিত ব্যক্তির সঙ্গে যে কোনোপ্রকারের যৌন সঙ্গমের ফলে আপনার সংক্রমণ হতে পারে৷ এইসব সংক্রমণের ফলে আপনি এবং আপনার গর্ভস্থ শিশু খুব অসুস্থ হয়ে পড়তে পারেন৷ ডাক্তার আপনার সংক্রমণ পরীক্ষা করবেন এবং সেইগুলি সামলাতে আপনাকে সাহায্য করবেন৷ আপনার স্ত্রী যোনির চারিপাশে ফুসকুড়ি বা প্রস্রাব করতে গিয়ে যন্ত্রণার মত উপসর্গের প্রতি লক্ষ্য রাখতে হয়৷ মনে রাখুন কোনোরকম উপসর্গ ছাড়াও আপনার সংক্রমণ হতে পারে৷ সুতরাং আপনার ডাক্তারের সঙ্গে সবকটা অ্যাপয়েন্টমেন্টে দেখা করা শ্রেয় নিম ফেস প্যাক ত্বক সম্পর্কিত সমস্যা কমাতে উপকারী আপনি জানেন যে নিম পাতা প্রাচীন কাল থেকেই ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে নিমের রয়েছে অনেক পুষ্টিগুণ খনিজ অ্যান্টিব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য অ্যান্টিফাঙ্গাল বৈশিষ্ট্য অ্যান্টিভাইরাল বৈশিষ্ট্য এগুলি শরীরের রোগ প্রতিরোধে সহায়ক হিসাবে বিবেচিত হয় অনেকেই ভাবছেন যে কীভাবে নিম ফেস প্যাকটি ব্যবহার করবেন এবং কীভাবে এটি ত্বকের জন্য উপকারী হতে পারে নিম পাতায় অনেক ঔষধি গুণ রয়েছে যা অনেক আয়ুর্বেদিক চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় নিম ফেস প্যাকটি ত্বকের সমস্যাগুলি দূর করতে প্রাচীন কাল থেকেই ব্যবহৃত হয়ে আসছে আপনারা জানেন যে নিম গাছ পাতা ফুল মূল সবই ত্বক সম্পর্কিত সমস্যার ঘরোয়া চিকিৎসায় ব্যবহৃত হয় বিজ্ঞানীর মতে নিম পাতাগুলিতে সর্বাধিক মানের গুণ রয়েছে এর পাতা পিষে এবং এটি অন্যান্য গুল্মের সাথে মিশিয়ে ত্বকে ফেস প্যাক হিসাবে ব্যবহার করলে ত্বকের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাটি শেষ হয় নিম ফেস প্যাকটি নিম্নলিখিত উপায়ে ব্যবহার করা যেতে পারেনিম এবং বেসনের মিশ্রণ তৈরি করে ফেস প্যাক তৈরি করতে পারেন এই প্যাকটি ত্বকের সৌন্দর্য বৃদ্ধিতে সহায়তা করে এই প্যাকটির ব্যবহার ত্বককে সুন্দর করে এবং আপনাকে তরুণ করে তোলেনিম ফেস প্যাকগুলি ত্বক থেকে কালো দাগ দূর করতে ব্যবহৃত হয়নিম ফেস প্যাকটি টোনার হিসাবে ব্যবহার করা যেতে পারে এটি ময়লা এবং তৈলাক্তভাব ত্বক থেকে দূর করেনিম দিয়ে অ্যালোভেরা ব্যবহার করে ফেসপ্যাক তৈরি করতে পারেন এই ফেস প্যাকটিতে ভাল পরিমাণে অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল গুণ রয়েছে যা ত্বককে সংক্রমণ থেকে রক্ষা করে নিম ফেস প্যাকের নিম্নলিখিত সুবিধা রয়েছে আসুন আমরা আরও ব্যাখ্যা করিত্বকের সংক্রমণের হাত থেকে রক্ষা পেতে নিম ফেস প্যাক – একজিমা বা সোরিয়াসিস ইত্যাদির মতো সংক্রমণের আক্রমণে ত্বকের সংক্রমণ শুরু হয় এই সমস্যাগুলি হ্রাস করতে নিম ফেস প্যাকটি খুব কার্যকর আপনি নিম ফেস প্যাকের সাথে রসুন এবং নারকেল তেল মিশ্রণ করতে পারেন কারণ এটি এন্টি ব্যাকটেরিয়াল বৈশিষ্ট্য যা সংক্রমণ রোধ করে এই পেস্টটি তৈরির জন্য কয়েকটি নিম পাতা সিদ্ধ করে একটি পেস্ট তৈরি করুন এখন এক চামচ নারকেল তেল এবং রসুন গরম করে পেস্টে মিশিয়ে ত্বকে লাগান কিছুক্ষণ পরে জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এই প্রক্রিয়াটি সপ্তাহে দুবার করা যেতে পারে (আরও পড়ুন – রসুনের কী কী সুবিধা রয়েছে)দাগ দূর করার জন্য নিম ফেস প্যাক – ত্বকের কালো দাগ দূর করার জন্য নিম ফেস প্যাকটি খুব উপকারী নিমে অনেক ধরণের ঔষুধি রয়েছে যা ত্বকে সংক্রমণ ছড়িয়ে দিতে এবং সুরক্ষা দেয় আপনি যদি ত্বকের দাগ দূর করতে চান তবে নিম ফেস প্যাক ব্যবহার করতে পারেনমুখের পিম্পলস দূর করতে – ব্রণর সমস্যার কারণে ত্বকের সৌন্দর্য কমে যায় ব্রণ থেকে মুক্তি পেতে নিম ফেস প্যাকের সাথে শসা ব্যবহার করা উচিত নিমের মধ্যে অ্যান্টিব্যাকটেরিয়া রয়েছে যা ব্রণ নিরাময় করে এবং শসা ত্বকের শীতলতা সরবরাহ করে এটি ব্যবহার করার জন্য কিছু নিম পাতার পেস্ট তৈরি করার পাশাপাশি শসার পেস্ট তৈরি করুন এবার দুটোই ভাল করে মিশিয়ে মুখে লাগান কিছুক্ষণ ম্যাসাজ করুন এবং পরিষ্কার জল দিয়ে ধুয়ে ফেলুন প্রতিদিন এই পদ্ধতিটি করে ব্রণর সমস্যা দূর হয় (আরও পড়ুন – ব্রণর জন্য ঘরোয়া প্রতিকার)চকচকে ত্বকের জন্য নিম ফেস প্যাক – ত্বককে সুন্দর নরম ও চকচকে করতে নিম ফেস প্যাকের ব্যবহার উপকারী নিমের পাতার সাথে মুলতানি মিট্টির ব্যবহার ত্বককে নরম করে এই পেস্টে কয়েকটি তুলসী নিম পাতা মধু এবং মুলতানি মাটি যুক্ত করে পেস্টটি তৈরি করে আপনার মুখে লাগান (আরও পড়ুন – মুলতানি মাটির উপকারিতা) ত্বকের সমস্যা দূর করতে নিম ফেস প্যাক ব্যবহার উপকারী এটি কারণ প্রাকৃতিকভাবে নিমের অনেক ঔlষধি গুণ রয়েছে তবে কিছু পরিস্থিতিতে ক্ষতিও হতে পারেআপনার ত্বক যদি সংবেদনশীল হয় তবে নিম ফেস প্যাকটি খানিকটা ব্যবহার করুন যদি ত্বকে জ্বালা শুরু হয় তবে আপনি ত্বকে লাগাবেন নানিম পাতায় বিভিন্ন ধরণের ঔষধি গুণ রয়েছে তবে অতিরিক্ত পরিমাণে ত্বকের ব্যবহারে সমস্যা দেখা দিতে পারেনিম ফেস প্যাক লাগিয়ে ত্বকে যদি কোনও গুরুতর সমস্যা হয় তবে আপনি ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করতে পারেনযদি আপনি প্রথমবারের জন্য নিম ফেস প্যাকটি ব্যবহার করেন তবে এটি আপনার হাত বা পায়ের ত্বকে করুনঅন্যান্য গুল্ম মিশ্রিত করে ত্বকে নিম ফেস প্যাক ব্যবহার করা উচিত(আরও পড়ুন – শীতে ত্বকের যত্ন কীভাবে করবেন) এটি মলের মধ্যে রক্তের উত্তরণ মলের রক্ত ​​৩ ধরনের হতে পারেপায়খানায় মল চলে যাওয়ার পরে চাপ দেওয়ার সময় বা মোছার সময় রক্ত ​​দেখা যেতে পারে এটি ফ্রেশ ব্লাড নামে পরিচিত রেক্টোঅ্যানাল অঞ্চলে রক্তপাত হলে তাজা রক্ত ​​সাধারণত দেখা যায়রক্তকে লাল বর্ণ হিসেবে দেখা নাও হতে পারে কিন্তু প্রকৃতপক্ষে মলের রং গাঢ় ও কালো হয়ে যেতে পারে এটি মেলানা নামে পরিচিত মেলেনা দেখা যায় যখন উপরের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টে রক্তপাত হয় খাদ্যনালী (খাদ্য পাইপ) পাকস্থলী বা ডুওডেনামমলের মধ্যে রক্ত ​​খালি চোখে দৃশ্যমান নাও হতে পারে তবে মাইক্রোস্কোপিক পরীক্ষায় দেখা যেতে পারে এটি অকল্ট ব্লাড নামে পরিচিত পুরো অন্ত্রের কোথাও ছোট ছোট রক্তপাত হলে দেখা যায়তাজা রক্ত ​​এবং মেলানা রোগীর দেখা যায় কিন্তু অকল্ট ব্লাড শুধুমাত্র ল্যাব দ্বারা মলের নমুনা পরীক্ষার পর দেখা যায় এইগুলির যে কোনও একটির উপস্থিতি অবশ্যই কোনও ধরণের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল প্যাথলজির ইঙ্গিত দেয় এটি উপেক্ষা না করা এবং অবশ্যই একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা এবং আরও তদন্ত করা গুরুত্বপূর্ণ মলের রক্ত ​​ইঙ্গিত করে যে গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ট্র্যাক্টের কিছু স্তরে রক্তক্ষরণ (রক্তপাত) রয়েছে এর একাধিক কারণ রয়েছে যা শুধুমাত্র তদন্তের সাথে একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ক্লিনিকাল পরীক্ষার মাধ্যমে নিশ্চিত করা যেতে পারে সম্ভাব্য কারণগুলো নিম্নরূপ1) পায়ূ ক্ষতফিসারস এটি মলদ্বারের আস্তরণে ছিঁড়ে যাওয়াফিস্টুলাস এটি একটি অস্বাভাবিক ট্র্যাক্টের গঠন যা মলদ্বার বা মলদ্বারের সাথে যোগাযোগ করেআলসারেশন মলদ্বারের মিউকোসায় আলসার|2) রেকটাল ক্ষতপাইলস হেমোরয়েড নামেও পরিচিত মলদ্বার এবং মলদ্বারের দেয়ালে শিরাগুলির প্রসারণ এবং রক্তপাতপলিপস মলদ্বারে ছোট অস্বাভাবিক বৃদ্ধি যা আঘাতের কারণে রক্তপাত হতে পারেপ্রক্টাইটিস (মলদ্বারের প্রদাহ)ক্যান্সার3) কোলনিক ক্ষতআমাশয়ডাইভার্টিকুলাপ্রদাহজনক অন্ত্রের রোগ (ক্রোহন রোগ আলসারেটিভ কোলাইটিস)4) অন্যান্যরক্তপাতের ব্যাধি\ মলের মধ্যে রক্তের উপস্থিতি একটি স্বাভাবিক আবিষ্কার নয় এবং অবিলম্বে একজন ডাক্তারকে জানাতে হবে রোগী কমোডের দেয়ালে রক্ত বা পানির লাল রং দেখতে পারে রোগীর অন্তর্বাসে রক্তের দাগ দেখা যেতে পারে খুব গাঢ় এবং কালো রঙের মলগুলিও উল্লেখযোগ্য এবং এটি মেলানা নামে পরিচিতঅন্যান্য সম্পর্কিত লক্ষণগুলি নিম্নরূপমলদ্বার বা মলদ্বারে ব্যথামলত্যাগের সময় ব্যথা(এ সম্পর্কে আরও জানুন রেকটাল প্রোল্যাপস কী)পেটের বাধাকোষ্ঠকাঠিন্যরক্ত বমি করা (হেমেটেমেসিস)মাথা ঘোরা(বিস্তারিত জানুন মাথা ঘোরা কি মাথা ঘোরার ঘরোয়া প্রতিকার)দুর্বলতাহাইপোটেনশন (নিম্ন রক্তচাপ)ধড়ফড়অজ্ঞান হওয়া ব্যাখ্যাতীত ওজন হ্রাস যাদের পেটে রক্তপাত বা হেমোরয়েডের ইতিহাস রয়েছেঅজ্ঞাত বা নির্ণয় করা প্রদাহজনক অন্ত্রের রোগপেপটিক আলসারের ইতিহাসউপরের গ্যাস্ট্রোইনটেস্টাইনাল ক্যান্সারের ঝুঁকি(বিস্তারিত জানুন পেটের ক্যান্সারের চিকিৎসা কি)নির্দিষ্ট ওষুধ গ্রহণমদ মলের রক্তের চিকিৎসা অন্তর্নিহিত কারণ অনুসারে পরিবর্তিত হয় নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে কারণগুলি নির্ণয় করা যেতে পারেপ্রক্টোস্কোপিপ্রতিমলদ্বার পরীক্ষাকোলোনোস্কোপি সিগমায়েডোস্কোপি আপার জিআই এন্ডোস্কোপি(বিস্তারিত জানুন কোলনোস্কোপি কি)ক্যাপসুল এন্ডোস্কোপিএন্টারোস্কোপিবেরিয়াম অধ্যয়নমল পরীক্ষাএমআরআই এবং সিটি স্ক্যান একবার কারণ সনাক্ত করা হলে নিম্নলিখিত চিকিৎসা পরিচালনা করা যেতে পারেডায়েট এবং লাইফস্টাইল পরিবর্তনের সাথে মিলিত ওষুধ বা সার্জারি বা এন্ডোস্কোপিক ইনজেকশনের মাধ্যমে পাইলস কমানো(বিস্তারিত জানুন পাইলস সার্জারি কি কারণ পরীক্ষা চিকিৎসা ঝুঁকি খরচ)পলিপ অপসারণ বা ক্যান্সারের বৃদ্ধি যা প্যাথলজিকাল পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়মেডিক্যাল থেরাপির মাধ্যমে পেপটিক বা ডুওডেনাল আলসারের চিকিৎসাপরজীবী সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিহেলমিন্থিক ওষুধপ্রদাহ বিরোধী ওষুধ দিয়ে প্রদাহজনক অবস্থার চিকিৎসারক্তাল্পতা লোহা সম্পূরক দ্বারা চিকিৎসা করা হয় গুরুতর রক্তক্ষরণের ক্ষেত্রে রক্ত সঞ্চালনের প্রয়োজন হতে পারেকোলন বা রেকটাল ক্যান্সারের ক্ষেত্রে সার্জারি কেমোথেরাপি বা রেডিওথেরাপির প্রয়োজন হতে পারেউপরে উল্লিখিত হিসাবে মলের মধ্যে রক্তের একটি সাধারণ কারণ হল পাইলসের সমস্যা রোগী মলদ্বারের চারপাশে চুলকানি ফোলাভাব এবং ব্যথা মলে রক্ত তলপেটে পূর্ণতা অনুভব করা এবং বসে থাকলে ব্যথার মতো সমস্যায় ভোগেন পাইলসের কারণে মারাত্মক রক্তক্ষরণ হতে পারে এবং গ্যাংগ্রেনাস হতে পারে তাই পাইলস সার্জারির মাধ্যমে অপারেশন করতে হবে ভারতের বিভিন্ন শহরে অনেক সূক্ষ্ম জেনারেল সার্জন আছে এবং অত্যন্ত স্বনামধন্য হাসপাতাল যেখানে পাইলস সার্জারি উচ্চ সাফল্যের হারে করা হয় মলের রক্ত ​​শুধুমাত্র কার্সিনোমা পাইলস ফিসার এবং ফিস্টুলাসের ঝুঁকি হ্রাস করে প্রতিরোধ করা যেতে পারে এটি দ্বারা করা যেতে পারেবর্ধিত জল এবং ফাইবার গ্রহণ জল মলকে আর্দ্র করে এবং ফাইবার মলের মধ্যে জল ধরে রাখতে সাহায্য করে যাতে তারা নরম এবং সহজে চলে যায়এটি মলত্যাগের সময় স্ট্রেনিং কমায় এইভাবে পাইলস ফিস্টুলা এবং ফিসার হওয়ার সম্ভাবনা অনেক কমে যায়(বিস্তারিত জানুন পাইলস রোগীদের ডায়েট প্ল্যান)ফাইবার কোলন পরিষ্কার করতে সাহায্য করে এবং কোষ্ঠকাঠিন্য প্রতিরোধ করে এইভাবে কার্সিনোমাস হওয়ার ঝুঁকি কমায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের উদাহরণ হল সিরিয়াল ব্রান লেগুম বীট এবং ফল পিসিলিয়াম হাস্ক এবং লাকতুলসএর মতো ফাইবার সাপ্লিমেন্টও ব্যবহার করা যেতে পারে চিয়া বীজে অনেক পুষ্টিকর উপাদান উপস্থিত এটি স্বাস্থ্যের জন্য খুব উপকারী এটি কে সুপার ফুড ও বলা হয় এটি আকারে খুব ছোট তবে গুণাবলী সহ সম্পূর্ণ এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার প্রোটিন ওমেগা 3 ফ্যাটি অ্যাসিড এবং বিভিন্ন মাইক্রোনিউট্রিয়েন্ট রয়েছে চিয়া বীজ সালভিয়া হিস্পানিকা বা চিয়া উদ্ভিদের অন্তর্ভুক্ত যা পুদিনা পরিবারের একটি প্রজাতি এই বীজটি মধ্য আমেরিকার অনেক অংশে পাওয়া যায় একে এক ধরণের ভেষজও বলা হয় যা সাম্প্রতিক বছরগুলিতে খুব জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে চিয়া স্বাভাবিকভাবেই শস্যের শ্রেণিতে পড়ে চিয়াতে রয়েছে অনেক পুষ্টিকর উপাদান উদাহরণস্বরূপ এক গ্লাস দুধের চেয়ে বেশি ক্যালসিয়াম বাদামের চেয়ে বেশি ওমেগা 3 এবং অনেক অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট উপস্থিত যা ব্যক্তিকে প্রচুর পরিমাণে শক্তি সরবরাহ করে চিয়া বীজ ওজন হ্রাস করার জন্য উপকারী কারণ এটির মধ্যে চর্বি শোষণ করার ক্ষমতা বেশি যা ব্যক্তির শরীরে পানির অভাব পূরণে সহায়তা করে চিয়া বীজের একটি পুষ্টিকর উপাদান রয়েছে এতে রয়েছে শর্করা ফাইবার ম্যাঙ্গানিজ ফসফরাস ক্যালসিয়াম দস্তা তামা পটাশিয়াম এবং চিয়া বীজ প্রয়োজনীয় ফ্যাটি অ্যাসিড আলফালিনোলেনিক এবং লিনোলিক অ্যাসিড পাশাপাশি ভিটামিন এ বি ই ডি এবং সালফার আয়রন আয়োডিন ম্যাগনেসিয়াম নিয়াসিন এবং থায়ামিন সহ খনিজ এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্টগুলির একটি প্রধান উৎস যা স্বাস্থ্যের জন্য উপকারী চিয়া বীজের অনেকগুলি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছেওজন হ্রাস – যদি কোনও ব্যক্তি ওজন হ্রাস করার চেষ্টা করে তবে তার জন্য চিয়া বীজ খুব উপকারী এতে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার রয়েছে যা ফ্যাট কমাতে সহায়তা করে শরীরের ওজন কমতে শুরু করেহাড় শক্তিশালীকরণ – হাড়কে শক্তিশালী করার জন্য ক্যালসিয়ামের প্রয়োজন চিয়া বীজে প্রচুর পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ম্যাগনেসিয়াম থাকে যা হাড়কে মজবুত করতে সহায়তা করে হাড়কে শক্তিশালী করার কারণে হাড়ের সমস্যা হয়নাশক্তি বাড়ানোর জন্য – চিয়াতে প্রাকৃতিকভাবে অনেক খনিজ এবং ভিটামিন থাকে যা শরীরে শক্তি জোগায় শরীরে আরও বেশি কাজ করার ক্ষমতা থাকা শুরু করে (আরও পড়ুন – বিপাক কী)ডায়াবেটিসে – চিয়াতে এমন অনেক পুষ্টি রয়েছে যা ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে এটি রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস করতে সহায়তা করে যা ইনসুলিন তৈরিতে সহায়তা করে শর্করা নিয়ন্ত্রণে থাকে চিয়া বীজের অনেকগুলি স্বাস্থ্য উপকারিতা রয়েছে তবে এর অনেক অসুবিধা থাকলেও অসুবিধাও রয়েছে এবং সেটার সম্পর্কে জানা খুব গুরুত্বপূর্ণকিছু বিজ্ঞানী চিয়া বীজ সম্পর্কে বলেছেন যে তাঁর দ্বারা পরিচালিত পরীক্ষায় দেখা গেছে যে এর বীজগুলি প্রোটেস্ট ক্যান্সার এবং স্তন ক্যান্সারকে বাড়িয়ে তুলতে পারে সুতরাং এটি সীমিত পরিমাণে ব্যবহার করা উচিতচিয়া বীজ বেশি খাওয়ার ফলে পেটের সমস্যা হতে পারে কারণ চিয়া বীজের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে ফাইবার থাকে তাই অল্প পরিমাণে চিয়া সেবন করুনযদি চিয়া বীজ গ্রহণ করে এক ধরণের স্বাস্থ্য সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে তাহলে সঙ্গে সঙ্গে এটি সেবন করা বন্ধ করুন অ্যালোভেরা এক ধরণের আয়ুর্বেদিক ঔষুধ এটি অনেক রোগ নিরাময়ে করতে সক্ষম অ্যালোভেরা এর গুণাবলীর জন্য খুব জনপ্রিয় অ্যালোভেরা ভারতের সাথে বহু দেশে এলোভেরা হিসাবে ব্যবহৃত হয় অ্যালোভেরা একটি রসালো উদ্ভিদ এর পাতা কেটে দেওয়া এটিকে জেল বের করা হয় এটি অনেক মারাত্মক রোগ নিরাময়ের জন্য ব্যবহৃত হয় তা ছাড়া এটি কুষ্ঠরোগও নিরাময় করতে সক্ষম অ্যালোভেরায় ভিটামিন এ (বিটাক্যারোটিন) সি ই ফলিক অ্যাসিড এবং কোলিন সহ অল্প পরিমাণে ভিটামিন এবং খনিজ থাকে এবং অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট থাকে যা মুক্ত র‌্যাডিক্যাল এর বিরুদ্ধে লড়াইয়ে সহায়তা করে এটি শরীরের জন্য উপকারী অ্যালোভেরার নিম্নলিখিত সুবিধা থাকতে পারেপিম্পলস দূর করতে – ত্বকে অতিরিক্ত তেল থাকার কারণে ব্রণর সমস্যা দেখা দেয় ব্রণর সমস্যা কাটিয়ে উঠতে অ্যালোভেরা জেল দিনে দুবার ব্যবহার করা উচিত এটি করে পিম্পল ধীরে ধীরে অদৃশ্য হতে শুরু করে (আরও পড়ুন – ব্রণর সমস্যার কারণ কী)ত্বকের জন্য – অ্যালোভেরা জেল ত্বক সম্পর্কিত বিভিন্ন সমস্যার জন্য খুব উপকারী অ্যালোভেরা জেল ত্বক কে হাইড্রেটেড এবং পুষ্টি সরবরাহ করে এটি ত্বকের পোড়া ক্ষত দাগ দূর করতে সহায়তা করে এগুলি ছাড়াও এটি ত্বকের সংক্রমণও নিরাময় করেকোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য – কোষ্ঠকাঠিন্য এমন একটি সমস্যা যা নিয়ে সবাই চিন্তিত এই সমস্যাগুলি কাটিয়ে ওঠার জন্য অ্যালোভেরার রস পান করা উচিত এটি ব্যক্তিকে মল পাস করা এবং কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থেকে মুক্তি দেয় আপনার কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা থাকলে অ্যালোভেরার রস পান করুন এবং কোষ্ঠকাঠিন্য থেকে মুক্তি পান ওজন হ্রাসে – আপনার বর্ধিত ওজন কমাতে অ্যালোভেরার রস প্রতিদিন খাওয়া উচিত অ্যালোভেরার জুসে এমন কিছু খনিজ ও অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট রয়েছে যা ফ্যাট কমায় এলোভেরা ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখে উচ্চ কোলেস্টেরল কমাতে – শরীরে কোলেস্টেরল থাকা প্রয়োজন তবে বেশি পরিমাণে কোলেস্টেরল থাকার কারণে অনেক ধরণের সমস্যা দেখা দেয় খারাপ কোলেস্টেরল হার্টের ক্ষতি করে অ্যালোভেরা বেশি পরিমাণে ব্যবহার করলে কোলেস্টেরলের মাত্রা বাড়ে অ্যালোভেরার অনেক সুবিধা রয়েছে তবে এই সুবিধার পাশাপাশি কিছু অসুবিধাও রয়েছেঅ্যালোভেরা লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হয় যদি কোনও ব্যক্তি অ্যালোভেরার রস পান করতে চান তবে প্রথমে চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করুন কারণ এর রসগুলিও ক্ষতিকারক হতে পারেগর্ভবতী মহিলাদের এবং স্তন্যদানকারী মহিলাদের অ্যালোভেরার রস ব্যবহার এড়ানো উচিত কারণ এটি তাদের স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক হতে পারেঅ্যালোভেরা বেশি পরিমাণে খাওয়া উচিত নয় এটি রক্তের বৃদ্ধি করে তবে পাশাপাশি এটি কিডনির ক্ষতি করেঅ্যালোভেরার রস বেশি পরিমাণে খাবেন না কেবলমাত্র এটি ডোজ হিসাবে গ্রহণ করুন অন্যথায় ডায়রিয়া হতে পারে (আরও পড়ুন – ডায়রিয়ার কারণ কী)অ্যালোভেরা ব্যবহারের কারণে যদি কোনও স্বাস্থ্য অনিয়ম হয় তবে তাৎক্ষণিকভাবে এর ব্যবহার সীমাবদ্ধ করুন এবং আপনার নিকটস্থ সাথে যোগাযোগ করুন থাইরয়েড হল একটি প্রজাপতির আকৃতির গ্রন্থি যা ঘাড়ের শ্বাসনালীর (বায়ুপ্রবাহ) সামনে থাকে থাইরয়েডের কাজ হল হরমোন সিক্রেট করা যা শরীরের কাজকে পরিবর্তন করে এবং নিয়ন্ত্রণ করে থাইরক্সিন (T4) এবং Triiodothyronine (T3) হল থাইরয়েড হরমোন এই হরমোনগুলি থাইরয়েড গ্রন্থি দ্বারা সরাসরি রক্তে সিক্রেটেড হয় এবং শরীরের বিভিন্ন অঙ্গে ভ্রমণ করে থাইরয়েড হরমোনের মাত্রায় অস্বাভাবিক কাজকর্ম বা কোনো ধরনের অস্থিরতা থাইরয়েড ব্যাধি নির্দেশ করে সূচক হিসাবে ব্যবহৃত প্রধান হরমোনগুলি হলথাইরয়েড স্টিমুলেটিং হরমোন (টিএসএইচ) এটি মস্তিষ্কের পিটুইটারি গ্রন্থি (মাস্টার গ্ল্যান্ড) দ্বারা সিক্রেটেড হরমোন থাইরয়েড হরমোন T3 এবং T4 এর উৎপাদন TSH দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয় T3 এবং T4 ঘুরে TSH এর ক্ষরণ কমায়থাইরক্সিন (টি 4) এটি থাইরয়েড দ্বারা সিক্রেট হরমোনগুলির মধ্যে একটি যা বেসাল বিপাকীয় হার এবং প্রোটিন সংশ্লেষণ নিয়ন্ত্রণ করেট্রাইওডোথাইরোনিন (টি 3) এটি টি 4 এর মতো একই কাজ করে কিন্তু এটি আরও শক্তিশালী এবং কম পরিমাণে সিক্রেটেড হয় থাইরয়েড ব্যাধিগুলি মূলত গলগণ্ড হিসাবে পরিচিত বিস্তৃত শব্দটির আওতায় থাকে থাইরয়েড গ্রন্থির বর্ধনকে বলা হয় গলগণ্ড এটি নিম্নরূপ শ্রেণীবদ্ধ করা হয়েছেসরল (অবিষাক্ত) গলগণ্ড এটি থাইরয়েড গ্রন্থির একটি সৌম্য বর্ধন যা গ্রন্থির কার্যক্রমে কোন পরিবর্তন করে না অর্থাৎ এটি একটি ইউথাইরয়েড অবস্থায় আছে (সাধারণত কাজ করে) সাধারণ গলগণ্ডের প্রকারভেদডিফিউজ হাইপারপ্লাস্টিক (সবচেয়ে সাধারণ)কলয়েড গলগণ্ডমাল্টিনোডুলার গলগণ্ডবিষাক্ত গলগণ্ড এটি T3 এবং T4 এর বর্ধিত সিক্রেটেড সাথে যুক্ত বড় হতে পারে বা নাও থাকতে পারে রোগী হাইপারথাইরয়েড অবস্থায় আছে (স্বাভাবিক কাজকর্মের উপরে) ব্যক্তি হাইপারথাইরয়েডিজমের লক্ষণ দেখায়কবর রোগ (বিস্তারিত জানুন কবরের রোগ কী)প্লামারের রোগবিষাক্ত নির্জন নোডুলনিওপ্লাস্টিক গলগণ্ড এটি ক্যান্সার বৃদ্ধির কারণে ঘটে যা সৌম্য বা ম্যালিগন্যান্ট হতে পারে (বিস্তারিত জানুন গয়টার কি)সৌম্যম্যালিগন্যান্ট কার্সিনোমা থাইরয়েড (এ বিষয়ে আরও জানুন থাইরয়েড ক্যান্সারের কারণ)থাইরয়েডাইটিস একটি অটোইমিউন প্রক্রিয়ার কারণে থাইরয়েড প্রদাহ যা থাইরয়েড গ্রন্থির হাইপার বা হাইপো কাজ করে (আরও পড়ুন হাইপোথাইরয়েডিজম কি)হাশিমোটোর থাইরয়েডাইটিসডি কোয়ারভেইনের থাইরয়েডাইটিসরিডেলের থাইরয়েডাইটিস থাইরয়েড রোগ নিম্নলিখিত কারণে হতে পারেআয়োডিনের অভাব (সবচেয়ে সাধারণ)গুইট্রোজেন ব্যবহার এগুলি রাসায়নিক যা থাইরয়েড হরমোনের সংশ্লেষণকে বাধা দেয়অটোইমিউন শরীর অ্যান্টিবডি তৈরি করে যা থাইরয়েডকে অত্যধিক উদ্দীপিত বা বাধা দেয় যা যথাক্রমে হাইপারথাইরয়েডিজম বা হাইপোথাইরয়েডিজম সৃষ্টি করেবিকিরণ এক্সপোজারদীর্ঘস্থায়ী সহজ গলগণ্ড ক্যান্সারে রূপান্তরিত হতে পারেজেনেটিক সংবেদনশীলতাবিরল কারণ ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণের কারণে বা অন্যান্য রোগের গৌণ | থাইরয়েড রোগের নিম্নলিখিত লক্ষণ থাকতে পারেঘাড়ের সামনে ফুলে যাওয়া ব্যথাহীন স্পন্দন (আপনার নিজের হৃদস্পন্দন শুনতে পাওয়া)কার্ডিয়াক তালের অনিয়মট্যাকিকার্ডিয়া (উচ্চ হার্ট রেট)এক্সোফথালমোস (চোখের পলকের প্রোট্রুশন)দুশ্চিন্তাঅনিদ্রাবিষণ্ণতা পরিবর্তিত মাসিক চক্রবন্ধ্যাত্ব (আরও পড়ুন বন্ধ্যাত্বের ঝুঁকির কারণ)বেসাল বিপাকীয় হার বৃদ্ধি বা হ্রাস ওজন হ্রাস বা ওজন বৃদ্ধিতাপমাত্রার পরিবর্তনে অসহিষ্ণুতাসংকোচনের কারণে ডিসপোনিয়া (শ্বাসকষ্ট) ডিসফ্যাগিয়া (গিলতে অসুবিধা) কণ্ঠস্বরের তীব্রতা অজ্ঞান আক্রমণ যে কোন থাইরয়েড ব্যাধি নির্ণয়ের জন্য মৌলিক তদন্ত থাইরয়েড প্রোফাইল নামে পরিচিত শব্দটির অধীনে আসে নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি থাইরয়েড প্রোফাইলে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছেথাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষা সিরাম টি 3 টি 4 টিএসএইচথাইরয়েডের আল্ট্রাসনোগ্রাফি (ইউএসজি)থাইরয়েড সিটি স্ক্যান বা এমআরআইসিরাম এলএটিএস দীর্ঘস্থায়ী থাইরয়েড স্টিমুলেটর (এলএটিএস) অ্যান্টিবডিগুলি কবর রোগের ক্ষেত্রে দেখা যায়সিরাম ক্যালসিটোনিন থাইরয়েডের কার্সিনোমাতে বাড়তে পারেFNAC ফাইন নিডেল অ্যাসপিরেশন সাইটোলজি কোষের মাইক্রোস্কোপিক মর্ফোলজি দেখার জন্য করা হয় যা ক্যান্সারের পাশাপাশি ক্যান্সারের ধরন সনাক্ত করতে সাহায্য করেঘাড়ের এক্সরে বর্ধিত বিস্তার এবং বর্ধিত থাইরয়েডের প্রভাব পার্শ্ববর্তী কাঠামোর উপর ক্যালসিফিকেশনের উপস্থিতি (সিএ থাইরয়েডে দেখা যায়)বুকের এক্সরে ক্যান্সারের বিস্তার বা বুকের গহ্বরে বর্ধিত থাইরয়েডের প্রসারের জন্য পরীক্ষা করা হয় পরোক্ষ ল্যারিঞ্জোস্কোপি ভোকাল কর্ডের নড়াচড়া কল্পনা করা (স্নায়ু সংকোচনের ক্ষেত্রে আন্দোলন কম হওয়া) থাইরয়েড রোগের চিকিৎসা নির্ভর করে রোগী যে ধরনের রোগে ভুগছে তার উপর থাইরয়েড রোগের চিকিৎসার প্রধান লাইন হল চিকিৎসা অস্ত্রোপচার হরমোন এবং বিকিরণসহজ (অবিষাক্ত) গলগণ্ডচিকিৎসা আয়োডিন পরিপূরকসার্জিক্যাল সাবটোটাল থাইরয়েডেক্টমি যেখানে থাইরয়েডের লোব এবং ইসথমাস উভয়ই সরানো হয় তবে শ্বাসনালী এবং খাদ্যনালীর সংযোগস্থলের কিছু অংশ সংরক্ষিত থাকেবিষাক্ত গলগণ্ডচিকিৎসা অ্যান্টিথাইরয়েড ওষুধ যা থাইরয়েড হরমোনের উৎপাদন কমায়বিকিরণ তেজস্ক্রিয় আয়োডিন ট্যাবলেট ইউথাইরয়েড অবস্থা অর্জনের জন্য থাইরয়েড টিস্যু ধ্বংস করতে সাহায্য করেঅস্ত্রোপচার মেডিকেল লাইন এবং বিকিরণ থেরাপি ব্যর্থ হলে এটি সাধারণত শেষ বিকল্প হয় টোটাল থাইরয়েডেকটমি বা সাবটোটাল থাইরয়েডেক্টমি করা হয়থাইরয়েডের নিওপ্লাজমসার্জিক্যাল সেন্ট্রাল নোড কম্পার্টমেন্ট নেক ডিসেকশন সহ মোট থাইরয়েডেক্টমি (ঘাড়ের লিম্ফ নোডগুলি সরানো হয়েছে)হরমোন উচ্চ মাত্রায় থাইরক্সিন টিএসএইচ সিক্রেট দমন করে আকারে বৃদ্ধি রোধ করেবিকিরণ তেজস্ক্রিয় আয়োডিন সেকেন্ডারিদের জন্য বিকিরণ থেরাপিকেমোথেরাপিথাইরয়েডাইটিসহরমোন এলথাইরক্সিন পরিপূরক হাইপোথাইরয়েডিজমের চিকিৎসার জন্যচিকিৎসা প্রদাহের চিকিৎসা এবং অটোইমিউন অ্যান্টিবডি কমাতে স্টেরয়েড থেরাপিসার্জিক্যাল সাবটোটাল বা হেমি থাইরয়েডেক্টমি করা হয় যদি থাইরয়েড ব্যাপকভাবে বৃদ্ধি পায় বা পার্শ্ববর্তী কাঠামোর সংকোচনের কারণ হয় এবং রোগীর অস্বস্তি সৃষ্টি করে যখন কোন থাইরয়েড ব্যাধি আসে তখন কোন খাদ্যের সীমাবদ্ধতা নেই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হল পর্যাপ্ত ব্যায়ামের পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবারের সাথে সুষম খাদ্য গ্রহণ করা এটি চিকিৎসকের দেওয়া চিকিৎসার পরিপূরক এবং চিকিৎসার প্রতিস্থাপন হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না এটি থাইরয়েড ডিসঅর্ডারের কারণে যে আরও সমস্যা দেখা দিতে পারে তা প্রতিরোধ করতে সাহায্য করে যেসব খাবার থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হতে পারে সেগুলোকেই এড়িয়ে চলতে পারেন গয়েট্রোজেনযুক্ত খাবার গাইট্রোজেনযুক্ত খাবারগুলি হলসয়া খাবার টফু সয়া দুধ সয়াবিন ইত্যাদিকাসাভামিল্টসক্রুসিফেরাস সবজি বাঁধাকপি ব্রকলি ফুলকপি ইত্যাদিএই খাবারগুলি শুধুমাত্র বিপুল পরিমাণে ক্ষতিকারক এবং অন্যথায় খাওয়া নিরাপদ থাইরয়েড রোগের সাথে সম্পর্কিত সমস্যাগুলি উপসর্গগুলিতে উপরে ব্যাখ্যা করা হয়েছে বিশেষ করে থাইরয়েড বৃদ্ধির কারণে যে সমস্যাগুলি দেখা দেয় তা হলডিসপোনিয়া (শ্বাসকষ্ট) বাতাসের পাইপের সংকোচনের কারণেখাদ্যনালীর সংকোচনের কারণে ডিসফ্যাগিয়া (গিলতে অসুবিধা)ল্যারিঞ্জিয়াল নার্ভের সংকোচনের কারণে কণ্ঠস্বরের তীব্রতা (ভোকাল কর্ড সরবরাহকারী স্নায়ু)সাধারণ ক্যারোটিড ধমনীর সংকোচনের কারণে অজ্ঞান হয়ে যাওয়া আক্রমণ যা মস্তিষ্কে রক্ত ​​বহন করে না যেকোন রোগের মতো থাইরয়েডের চিকিৎসাও সম্ভব থাইরয়েডের চিকিৎসা ওষুধ সার্জারি ইত্যাদির মাধ্যমে করা যেতে পারে যদি কোন থাইরয়েড রোগের সন্দেহ থাকে তাহলে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা জরুরী থাইরয়েডের জন্য ট্যাবলেট সকালে খালি পেটে নেওয়া যেতে পারে এর বাইরে কিছু লোক খাবারের 50 মিনিট আগে পিলটি খেতে পারে TSH 0 থেকে 5 IU/ml (প্রতি মিলি আন্তর্জাতিক ইউনিট)T3 12 থেকে 31 nmol/l (ন্যানোমোল প্রতি লিটার)T4 55 থেকে 150 nmol/lবিনামূল্যে T3 3 থেকে 9 nmol/lবিনামূল্যে T4 8 থেকে 26 nmol/l(দ্রষ্টব্য সাধারণ পরিসীমা ল্যাব থেকে ল্যাবে পরিবর্তিত হয়) না থাইরয়েড ফাংশন পরীক্ষার জন্য একজনকে ফাস্টিং করতে হবে না থাইরয়েডকে মূল থেকে নির্মূল করতে আপনার ডাক্তারের দেওয়া নির্দেশাবলী অনুসরণ করুন এর বাইরেও কিছু ঘরোয়া প্রতিকারের ব্যবহার থাইরয়েডকে মূল থেকে নির্মূল করতে সাহায্য করতে পারে একটি সুষম খাদ্য বজায় রাখা এবং নিয়মিত ব্যায়াম করার সাথে ডাক্তারের চিকিৎসার পরিপূরক গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া অন্য কোনো ঘরোয়া প্রতিকার বা ওষুধ চেষ্টা করবেন না হ্যাঁ থাইরয়েড রোগ থাইরয়েড গ্রন্থিতে ব্যাঘাতের কারণে হয় এ ছাড়া এটি হরমোনের ভারসাম্যহীনতার কারণে হতে পারে গলা ব্যথা ফোলা এবং ভারী হওয়ার মতো লক্ষণ দেখা দিতে পারে থাইরয়েড ক্যান্সারের সঠিক কারণ জানা নেই কিন্তু একটি বর্ধিত থাইরয়েড গ্রন্থি ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলতে পারে থাইরয়েড গ্রন্থি হৃদস্পন্দন ওজন এবং হরমোন নিয়ন্ত্রণে সাহায্য করে থাইরয়েড ক্যান্সার হয় যখন কোষগুলি পরিবর্তন হয় অস্বাভাবিক কোষগুলি টিউমার তৈরি করতে শুরু করে এবং অস্বাভাবিক কোষগুলি আশেপাশের টিস্যুকে আক্রমণ করতে পারে এখান থেকে এটি শরীরের অন্যান্য অংশে ছড়িয়ে পড়তে শুরু করে থাইরয়েড ক্যান্সার টিউমারে পাওয়া কোষের উপর ভিত্তি করে শ্রেণীবদ্ধ করা যায় সঠিক উপায়ে থাইরয়েডের চিকিৎসা করিয়ে রোগী কয়েক মাসের মধ্যে তা থেকে দ্রুত মুক্তি পেতে পারে থাইরয়েডের চিকিৎসা রোগীর অবস্থার উপর নির্ভর করে কারণ কিছু লোককে প্রতিদিন ওষুধ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয় কিছু লোক থাইরয়েড থেকে পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করার জন্য অন্যান্য পরীক্ষার ভিত্তিতে চিকিৎসা করা হয় থাইরয়েড পরীক্ষার খরচ সাধারণত টিএসএইচ টি 3 এবং টি 4 প্যারামিটার নিয়ে গঠিত হয় INR 300 INR 500 কিন্তু এটি কিছু জায়গায় এর চেয়ে কম বা বেশি হতে পারে গর্ভাবস্থায় থাইরয়েডের সমস্যা থাকলে অনেক ঝুঁকি থাকে অস্বাভাবিক থাইরয়েড গ্রন্থির হরমোনের কারণে শিশুর মানসিক ও শারীরিক বিকাশে সমস্যা দেখা দেয় এ ছাড়া শিশুর অকাল জন্ম হতে পারে অথবা মায়ের ঘন ঘন গর্ভপাত হতে পারে সুতরাং থাইরয়েড পরীক্ষা সাধারণত গর্ভধারণের আগে এবং গর্ভাবস্থায় করা হয় যদি গর্ভাবস্থায় কেউ থাইরয়েড রোগে আক্রান্ত হয় তবে এটি সাধারণত খুব বড় সমস্যা নয় অনেক ওষুধ আছে যা গর্ভাবস্থায় ব্যবহারের জন্য নিরাপদ যদি আরও সুনির্দিষ্ট চিকিৎসার প্রয়োজন হয় তবে প্রসবের আগ পর্যন্ত কেবল নিরাপদ ওষুধ দেওয়া হয় তার পরে মাকে অস্ত্রোপচার বা রেডিওথেরাপির জন্য নেওয়া যেতে পারে তোমার বাচ্চা হাঁটতে শুরু করেতোমার বাচ্চা হয়তো কথা বলছে বা মুখ দিয়ে শব্দ করছে যা কথার মত শোনায় ওর মস্তিষ্ক বাড়ছে আর ওর কথা বলার ক্ষমতাও বাড়ছে মন দিয়ে ওর কথা শোনো আর সাড়া দাও এতে ও উৎসাহ পাবেওর এখন প্রায় এক বছর বয়েস হল ঠিকমত সব কিছু না বুঝলেও এই বয়েসে পরিবার ও বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে মিলেমিশে উৎসব ও অনুষ্ঠান পালন ওকে নিরাপত্তা ও একজোট হওয়ার অনুভূতি দেয় বাড়ির কাছাকাছি সাদাসিধা অনুষ্ঠান ওর ভালো লাগবে অনেক লোকজন থাকলে ও ঘাবড়ে যেতে পারেতুমি হয়তো দেখবে তোমার বাচ্চা এখনও জিনিসপত্র মুখে পুরে দিয়ে সেগুলো সম্বন্ধে জানছে উঁচু জিনিসে হাত পাওয়ার জন্য ও চেয়ারের উপরেও চড়তে পারে এখন খেয়াল রাখো ওর দিকে নজর রাখো আর বিপজ্জনক জিনিসপত্র নাগালের বাইরে সরিয়ে ফেলোতোমার বাচ্চা তোমাকে খুশি করতে চায় তাই কী করে ও তোমায় সাহায্য করবে তা যত তাড়াতাড়ি ইচ্ছে ওকে শেখাতে পারো কাজকর্মকে মজাদার করে তুলতে সেগুলোকে খেলা বানিয়ে নাও কাজটাকে ছোট ছোট ভাগে ভাগ করে ওর সঙ্গে সেটা করোতোমার বাচ্চা হয়তো এর মধ্যে হাঁটা শুরু করে দিয়েছে কিংবা কিছুদিনের মধ্যেই হাঁটতে আরম্ভ করবেওকে খুব মজা করে হাঁটতে শেখাতে পারো ওর সামনে দাঁড়িয়ে বা হাঁটু গেড়ে বসে তোমার হাতদুটো বাড়িয়ে দাও ওর হাত দুটো ধরে ওকে তোমার দিকে হাঁটাও ও হয়তো প্রথম হাঁটার সময় দু পাশে হাত ছড়িয়ে রাখবে এবং কনুই থেকে হাত ভাঁজ করে রাখবে টাল সামলানোর জন্য ও পা দুটোও বাইরের দিকে করে আর পেছনটা উঁচু করে রাখতে পারে তোমার বাচ্চার কৌতূহল বাড়ছেতোমার বাচ্চা এবার নিজে নিজে খেতে চাইবে হয়তো ওকে খাওয়ানোর সময় ও চামচটা আঁকড়ে ধরে বা তোমার থালা থেকে খাবার নেয় ওর থালায় নরম খাবারের ছোট ছোট দলা দিয়ে দেখো তো ওগুলো তুলে তুলে খেতে ও খুব মজা পাবে মনে রেখো মেয়েদের আর ছেলেদের সমান পরিমাণ খাবার লাগেতোমার বাচ্চার হয়তো ভালোরকম খিদে থাকতে পারে কিন্তু ওর হয়ত বেশি দাঁত নেই এমন খাবার দিয়ে শুরু করো যা ও মাড়ি দিয়ে চিবোতে পারবে বা সহজেই মুখের মধ্যে নাড়াচাড়া করতে পারবেএই বয়েসে বাচ্চাদের খুব কৌতূহল বাড়ে ও হয়তো খেলনা ছুঁড়ে ফেলে বা ওর বোনের চুল ধরে টান দেয় তোমার বাচ্চা দুষ্টুমি করছে না শুধু পরীক্ষা করে দেখছে সবকিছু ওর কিছুই খুব বেশিক্ষণ মনে থাকবে না তাই এখন ওর কাছে শাসনের বিশেষ মানে নেই তবে ওকে সহজেই ভোলানো যায় তাই তুমি পছন্দ করো না এমন কোনো কাজ করা থামাতে হলে ওকে একটা খেলনা দেখাও কিংবা একটা গান গেয়ে শোনাওওর দাঁতের মধ্যে ফাঁক থাকলে চিন্তা কোরো না ওর তিন বছর বয়েসের মধ্যে সবগুলো দুধের দাঁত গজিয়ে গেলে দাঁতের ফাঁকগুলো বন্ধ হয়ে যাবে মনে হয়এই রকম সময়ে তোমার বাচ্চা হয়তো তোমার চলে যাওয়া নিয়ে ভয় পেতে পারে ও তোমার সঙ্গে এতটাই জড়িয়ে আছে যে এক মিনিটের জন্য ওকে ছেড়ে গেলেও ও হয়তো কাঁদতে শুরু করতে পারে এটা স্বাভাবিক এবং অল্প সময়ের জন্য তোমাকে ছেড়ে থাকলে তোমার বাচ্চার অন্য লোকের সঙ্গে মেলামেশা করতে সাহায্য হবে ও খুব তাড়াতাড়িই শিখে যাবে যে তুমি সব সময় ওর কাছে ফিরে আসবেএতদিনে তোমার বাচ্চার মনের ভাব আরো স্পষ্ট হয়ে বোঝা যাচ্ছে ও হয়তো যাদের চেনে তাদের দিকে চুমু ছুঁড়ে দিতে পারে ও অন্য লোকের মনের ভাবও খেয়াল করতে আর সেগুলো নকল করতে শুরু করছে কাউকে কাঁদতে দেখলে ওও হয়তো কান্না জুড়ে দিতে পারে তোমার বাচ্চাকে শক্ত খাবার খাওয়াওতোমার বাচ্চা বুকের দুধের সঙ্গে এবার বাড়ির খাবার খাওয়ার জন্য তৈরি প্রথমে ও একটুখানি খাবারই খেতে পারবে এক চামচই যথেষ্ট চটকানো ঘরোয়া খাবার খেতে ওর ভালো লাগবে ওর দিকে মুখ করে বসে তোমার পরিষ্কার আঙুলে বা চামচে করে ওকে অল্প একটু নরম খাবার দাও মুখের ভেতর কী করে জিভ দিয়ে খাবারটা নাড়াচাড়া করে গিলতে হয় তা বুঝতে ওর হয়তো একটু সময় লাগবে ধৈর্য ধরো ও শিখে যাবেপ্রথমে ওকে দিনে একবার চটকানো খাবার দিয়ে শুরু করো তারপরে দিনে দুবার ও তার পরে দিনে তিনবার ও হয়তো চটকানো খাবারের আগে কিছুটা বুকের দুধ আবার পরেও কিছুটা বুকের দুধ চাইতে পারেএই মাসে হয়তো তোমার বাচ্চার প্রথম দাঁত উঠতে পারে নিচের পাটির সামনের কোনো একটা দাঁতই সাধারণত প্রথমে ওঠেও হয়তো একটা হাত অন্য হাতের তুলনায় বেশি ব্যবহার করতে শুরু করবে তারপরে হয়তে হাত অদলবদল করতে পারে কিন্তু ওর দু তিন বছর বয়েসের আগে তুমি ঠিক করে বুঝবে না যে ও ডানহাতি না বাঁহাতি ওকে ছোট একটা জিনিস ধরে এহাত ওহাত করতে দাও এতে ওর দক্ষতা গড়ে উঠতে সাহায্য হবেতোমার বাচ্চা হয়তো এখন আরো চঞ্চল হয়ে উঠছে এবং ও এখন অন্য বাচ্চাদের সঙ্গে মিশতে পছন্দ করবেতোমার বাচ্চা কি কোনো বিশেষ একটা জিনিস বা খেলনা পছন্দ করে তাহলে কিছুদিনের মধ্যেই ও ওটা ছাড়া কোথাও যেতে পারবে না এটা স্বাভাবিক এবং তোমার বাচ্চার বাড়তে থাকা স্বাধীনতার চিহ্ন কারণ ও ভরসা পাওয়ার জন্য তোমার বদলে একটা খেলনা বা কাপড় কাজে লাগাতে পারে ওকে এইভাবে সাহায্য করা যায়আপনার শিশুর প্রথম কয়েক সপ্তাহে ওর মলত্যাগের রুটিন তৈরী হতে কিছুটা সময় লাগবে৷ একদিন হয়ত ওর পায়খানা পাতলা হবে আবার পরের দিন শক্ত হবে৷ কোনটা স্বাভাবিক আপনি শীঘ্রই বুঝতে পারবেন৷যতদিন আপনার শিশু শুধুই বুকের দুধ খাবে ওর মল নরম থাকবে ও মলত্যাগ সহজ হবে৷ যখন ও শক্ত খাবার খেতে শুরু করে তখন কোষ্ঠকাঠিন্য হতে পারে হয়ত ওর পায়খানা শক্ত হয়ে উঠবে মলত্যাগ করতে কষ্ট হবে ও সাধারণত যতবার পায়খানা হত ততবার হবে না৷কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণগুলি সহজেই বোঝা যায়৷যদি পায়খানা করতে গিয়ে আপনার শিশু কান্নাকাটি করে সেটা একটা লক্ষণ হতে পারে৷ আপনি এটাও লক্ষ্য করতে পারেন যে তার মল শুকনো ও শক্ত৷ সে স্বাভাবিকের তুলনায় কম পায়খানা করতে পারে কখনো কখনো সারা সপ্তাহে মাত্র 3 বার পায়খানা করতে পারে৷মল ও গ্যাসে দুর্গন্ধ হলে সেগুলিও কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ৷ আরেকটা লক্ষণ হল পেট শক্ত হয়ে ফুলে যাওয়া৷আপনি কী করতে পারেন যদি আপনার শিশুর বয়স 6 মাসের কম হয় এবং যদি আপনার মনে হয় যে ওর কোষ্ঠকাঠিন্য হয়েছে তাহলে ওকে প্রচুর বুকের দুধ খাওয়ান৷ বুকের দুধই হল আদর্শ ওকে জল বা অন্য কোনো পানীয় দেবেন না শুধু বুকের দুধ দিন৷যদি আপনার শিশু শক্ত খাবার খাওয়া শুরু করে থাকে তাহলে ওকে বুকের দুধ ছাড়াও প্রচুর পরিমাণে ফল ও সব্জি খেতে দিন আর পরিষ্কার সুরক্ষিত জল খাওয়ান৷ এটা ওর মল নরম করতে সাহায্য করবে৷কখনো কখনো খুব তরল পায়খানাও কোষ্ঠকাঠিন্যের লক্ষণ হয়৷ যে শক্ত মল পাচন তন্ত্রে বাধা সৃষ্টি করে তার চারিপাশ দিয়ে তরল পায়খানা নড়াচড়া করতে পারে৷ যদি আপনার মনে হয় আপনার শিশুর এইরকম কিছু হয়েছে তাহলে ডাক্তার দেখান৷ বসতে শেখার পরে শিশুর বড় সাফল্য হল হামাগুড়ি দিতে শেখা৷ সাধারণত তবে সবসময় না এর পরেই সে হাঁটতে শিখে যায়৷6 এবং 9 মাস বয়সে পৌঁছে হয়ত আপনার শিশু হামাগুড়ি দিতে শিখে যায়৷ তার মানে 1 বছর বয়সে সে হয় ভালোভাবে হামাগুড়ি দিতে পারবে৷তবে সব শিশু কিন্ত হামাগুড়ি দেয় না৷ হয়ত দেখবেন আপনার শিশু হামাগুড়ি না দিয়ে পিছন ঘষে চলে বেড়াচ্ছে৷ বা হয়ত সে পেট ঘষে ঘষে ঘুরে বেড়াচ্ছে৷কয়েকজন শিশু একেবারেই হামাগুড়ি দেয় না৷ বরং তারা সরাসরি সোজা হয়ে দাঁড়াতে ও তারপরে হাঁটতে শিখে যায়৷ আপনার শিশু কীভাবে শিখছে তা জরুরি নয় যা জরুরি তা হল আপনার শিশু যথেষ্ট ছটফটে কিনা৷বিভিন্ন গতিতে শিশুদের বিকাশ হয়৷ যদি আপনার চিন্তা হয় যে আপনার শিশুর হামাগুড়ি দিতে বা চলাফেরা করতে দেরী করছে তাহলে স্বাস্থ্য কর্মীর সঙ্গে কথা বলুন৷ তোমার বাচ্চা উলটে যেতে পারেতোমার বাচ্চা এখনও তোমার মত করে মনের ভাব বোঝাতে পারে না কিন্তু ওর রাগ হলে বিরক্ত বা খুশি হলে ও তোমাকে জানিয়ে দেবে কোলে উঠতে চেয়ে দু হাত উঁচু করে ও তোমার প্রতি ওর ভালোবাসা বোঝাবে তুমি ঘর ছেড়ে চলে গেলে ও কাঁদতেও পারেএখন ওর জোর অনেক বেড়েছে মেঝেতে বসিয়ে দিলে দেখবে ও হয়ত কিছুক্ষণ নিজে নিজেই বসে থাকতে পারছে যদি পড়ে যায় তাই ওর চারদিকে বালিশ দিয়ে দাও আর তুমিও কাছাকাছি থাকোও হয়তে হঠাৎ উলটে গিয়ে তোমায় চমকে দিতে পারে যাতে গড়িয়ে পড়ে না যায় তাই ওকে খাট বা কোনো উঁচু জায়গায় একা ছেড়ে যেও না মেঝেতে পরিষ্কার কাপড়ের উপরে শুইয়ে তুমি ওর ন্যাপি পালটাতে পারোতোমার বাচ্চার দৃষ্টিশক্তি এখনও বিকশিত হচ্ছে ও এখন ছোট ছোট জিনিস বা নড়তে থাকা জিনিস দেখতে পায় ওর প্রিয় খেলনাটাকে লুকিয়ে রাখো যাতে সেটার একটা কোণা শুধু দেখা যায় ও ওটা খুঁজে বার করতে খুব মজা পাবেতোমার বাচ্চা হয়তো এখন তোমায় নকল করতে পারবে জিভটা বার করো গাল দুটো ফোলাও আর দেখো ও তোমায় নকল করে কিনাতোমার বাচ্চা এখন প্রায় তোমার মত করেই পৃথিবীটাকে দেখে ও শোনে ওর ভাব প্রকাশের ক্ষমতা দ্রুত বিকশিত হচ্ছে ওর আওয়াজগুলো ওর মনের ভাব বোঝায় ও হয়তো খুশি উৎসুক বা সমস্যা সমাধান করে পরিতৃপ্ত বোধ করতে পারেও আধো আধো কথা বলতে শুরু করতে পারে বা মা গার মত শব্দ বার বার বলে এগুলো সবই যখন ও কথা বলবে তার জন্য তৈরি হওয়া শক্ত খাবার খাওয়া একটা বড় পদক্ষেপআপনি নিজেই বুঝতে পারেন আপনার শিশু শক্ত খাবার খাওয়ার জন্য তৈরী কিনা৷ যখন তার 6 মাস বয়স হয়ে যায় তখন৷ যে শিশু শক্ত খাবার খাওয়ার জন্য প্রস্তুত থাকে সে সাধারণত এই কাজগুলি করতে পারেসে মাথা উপরদিকে তুলতে পারে৷হেলান দেওয়ার সুবিধা পেলে সে ভালো করে বসতে পারে৷ প্রথমে হয়ত আপনার শিশুকে কোলে নিয়ে বসাতে হবে৷সে চিবানোর মত মুখভঙ্গী করবে৷ আপনার শিশু তার মুখের ভিতরে খাবার ঢোকাতে পারবে ও গিলে খেতে পারবে৷আপনি কী খাচ্ছেন সেই ব্যাপারে সে উৎসুক হবে৷ যখন শিশুরা আপনার খাবারের দিকে তাকায় ও সেদিকে হাত বাড়িয়ে দেয় তার মানে সে শক্ত খাবার খাওয়ার জন্য প্রস্তুত৷তার শরীরের ওজন স্বাস্থ্যকর৷ বেশির ভাগ শিশুর জন্মের সময় যা ওজন থাকে তার দ্বিগুণ ওজন হয়ে গেলে তারা মন্ড করা শক্ত খাবার খাওয়ার জন্য তৈরী হয়ে যায়৷ এটা সাধারণত প্রায় 6 মাস বয়সে হয়৷6 মাস বয়সের আগেই আপনার শিশুর এই লক্ষণগুলি হয়ত আপনার চোখে পড়ে৷ তবে তাকে চটকানো খাবার খেতে দেওয়ার আগে তার 6 মাস বয়স হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা নিরাপদ৷ ততদিনে তার হজমশক্তি আরো মজবুত হয়ে যায়৷ তার অর্থ এই যে তার পেটের গোলমাল বা খাবারে খারাপ প্রতিক্রিয়া হওয়ার সম্ভাবনা কম থাকে৷ 4 এবং 7 মাস বয়সে আপনার শিশু বসে থাকার মত যথেষ্ট শক্তপোক্ত হয়ে যায়৷যদি ওকে আপনার কোলে বসিয়ে রাখেন বা মেঝেতে বসিয়ে দেন তাহলে কয়েক মুহূর্ত আপনার কোনোরকম সাহায্য ছাড়া ও হয়ত বসে থাকতে পারবে৷শিশুকে বসতে শেখানোর জন্য ওর পা দুটো ছড়িয়ে রাখুন যাতে ওর শরীরের ওজনের ভারসাম্য থাকে৷ এটা ওর উল্টে পড়ার ভয় কমিয়ে দেয় এইভাবে ওকে বসিয়ে দেওয়ার পরে ওর সামনে ওর প্রিয় খেলনা রেখে দিন৷ ওর চারিপাশে কম্বল বা বালিশ ঠেস দিয়ে রাখুন যাতে পড়ে গেলে ওর ব্যথা না লাগে৷ ওর প্রতি নজর রাখার জন্য কাছাকাছি থাকুন৷এছাড়া আপনার শিশুকে পেটে ভর দিয়ে খেলতেও উৎসাহিত করতে পারেন৷ একটা খেলনা দেখার জন্য আপনার শিশুকে যে মাথা ও বুক উপরদিকে তুলে রাখতে হবে তাতে ওর ঘাড়ের মাংসপেশী মজবুত হবে এবং বসে থাকার জন্য ওর মাথার ভার সামলানোর ক্ষমতারও বিকাশ হবে৷ ওর পা সোজা করতে ওকে সাহায্য করার জন্য আপনি ওকে নিজের ঊরুর উপর দাঁড় করিয়ে উপর নিচে করে ঝাঁকাতে পারেন৷ এইভাবে হয়ত ও খিলখিল করে হেসে উঠবে8 মাস বয়সে পৌঁছে ওর হেলান ছাড়াই ভালোভাবে বসতে শিখে যাওয়া উচিত প্রায় 6 মাস বয়সে বেশির ভাগ শিশুর প্রথম দাঁত ওঠে৷ তবে শিশুদের 3 মাস এবং 1 বছর সময়ের মধ্যে যে কোনো সময় দাঁত গজাতে পারে৷ সাধারণত সামনের দিকে নিচের পাটিতে প্রথম দাঁত দেখা যায়৷যদি আপনার শিশুর দাঁত গজায় তাহলে এই লক্ষণগুলি দেখতে পাবেনওর মাড়ি লাল হয়ে ফুলে যায় ও ওর মুখ ও গাল লাল হয়ে ওঠেওর মুখ দিয়ে সমানে লালা ঝরেযেদিকে ওর দাঁত উঠছে ও সেদিকের মাড়ি ও কান ঘষার চেষ্টা করেযন্ত্রণায় রাতে ওর ঘুম ভেঙে যায়যখন আপনার শিশুর 2 বছর বয়স হয় ততদিনে ওর পুরো 20 টা দুধের দাঁতের সারি গজিয়ে যাওয়া উচিত৷আপনার শিশুর দাঁত ওঠার পর থেকেই ওর দাঁত মাজা শুরু করে দেওয়া শ্রেয়৷ নরম টুথব্রাশ ও যদি টুথপেস্ট থাকে ব্যবহার করুন৷ আপনার শিশুর দাঁত ও মাড়ি দুইয়ের উপরিভাগ পরিষ্কার করে দেওয়ার চেষ্টা করুন৷কয়েকজন শিশুর দাঁত ওঠার সময় খেতে কষ্ট হয়৷ বুকের দুধ খাওয়ার সময় চুষতে গিয়ে ফোলা মাড়িতে আরো রক্ত এসে পড়ে৷ এই সময় মাড়ি খুব স্পর্শকাতর থাকে৷ তাই ও হয়ত আপনার বুকের দুধ খেতে চাইবে না৷স্পষ্টত দাঁত ওঠার সময় শিশুরা বিরক্ত বোধ করে ও অস্থির হয়ে পড়ে৷ ওকে আদর করে শান্ত করার যথাসাধ্য চেষ্টা করুন৷আপনার শিশুর দাঁত ওঠার সমস্যার নিরাময়ের জন্য মধু ব্যবহার করবেন না৷ বরং ওকে চিবানোর জন্য পরিষ্কার নরম কিছু দিন৷ ঐসব জিনিস এত ছোট হওয়া উচিত নয় যে গিলে ফেলা যায় বা এত নরম হওয়া উচিত নয় যে টুকরো হয়ে যায়৷ এমন জিনিস ওর গলায় আটকে যেতে পারে৷ জন্মের মুহূর্ত থেকেই আপনার শিশু কথা বলতে শিখছে৷ওর কান্নাই ওর প্রথম কথার ভঙ্গী৷ খিদে পেলে অস্বস্তিবোধ করলে বা ক্লান্ত হলে ও কেঁদে জানায়৷বড় হওয়ার সাথে সাথে আপনার শিশু আপনার ও ওর আশেপাশের লোকদের কথাবার্তা শুনে আপনাদের নকল করার চেষ্টা করে৷ ও আপনার সঙ্গে কথা বলতে চায়আপার শিশুর চোখের দিকে তাকিয়ে যতটা সম্ভব ওর সঙ্গে কথা বলুন৷ অন্যদের ও অন্য কিছুর ব্যাপারে কথা বলার সময় ঐদিকে আঙুলের ইশারা করে দেখান৷3 এবং 4 মাসে ওর কান্না কম হবে ও নানা রকম শব্দ করতে শুরু করে৷ ও নিজের নাম চিনতে শুরু করে৷ একটু দূর থেকে ওর নাম ধরে ডাকুন ও সাড়া দেয় কিনা দেখুন৷5 এবং 6 মাসে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে আপনার শিশু নানারকম শব্দ করে এবং খেলার সময় নিজের মনে বক বক করে৷ ও হয়ত বার বার বা কিংবা মা এর মত শব্দ করবে৷7 মাস বয়স এবং 1 বছরের মধ্যে ও নতুন শব্দ বলতে চেষ্টা করে এবং আপনি যা বলেন তা নকল করার চেষ্টা করে৷ চেনা জিনিসপত্রের নামগুলি যেমন বল এখন ও চিনতে পারে৷প্রায় 1 বছর বয়স থেকে ও হয়ত একটা দুটো শব্দ ব্যবহার করতে শুরু করবে এবং ঐ শব্দগুলির মানে বুঝবে৷15 মাস বয়স পর্যন্ত যদি আপনার শিশু কোনো কথা না বলে এবং আপনার দুশ্চিন্তা হয় তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলুন৷ যে শিশু ভালোভাবে বেড়ে উঠবে সে প্রাণবন্ত কর্মশক্তিতে ভরপুর হবে এবং খেলতে চাইবে৷ও কি সরাসরি আপনার দিকে দেখছে হয়ত ও আপনাকে দেখে হাসবে তাহলে আপনি বুঝতে পারবেন যে ও ভালোভাবে দেখতে পাচ্ছে৷আপনি কী লক্ষ্য করেছেন যখন ওকে কোলে তুলে নেন তখন ও আগের চেয়ে কত ভারী হয়ে উঠছে তার মানে ও ভালো করে খাওয়াদাওয়া করছে৷নতুন শব্দ শুনে ও কী মুখ ঘুরিয়ে সেই দিকে তাকাচ্ছে তার মানে ও ভালোভাবে শুনতে পাচ্ছে৷যদি আপনার শিশু ঘুমাচ্ছন্ন থাকে কর্মশক্তির অভাব হয় ও খেলতে না চায় তাহলে কোনো গোলমাল আছে কিনা জানার জন্য ওকে স্বাস্থ্য কর্মীর কাছে নিয়ে যাওয়া দরকার৷যদি আপনার শিশু অসুস্থ আছে বা যদি ওর ব্যাপারে আপনার কোনো দুশ্চিন্তা থাকে তাহলে প্রতি মাসে একটা সুতো দিয়ে ওর উর্ধ্ববাহু অর্থাৎ হাতের উপরদিক মেপে দেখবেন৷ সুতোয় চিহ্ন দিয়ে রাখুন যাতে পরের বার যখন মেপে দেখবেন তখন আপনি বুঝতে পারেন ও কতটা বেড়েছে৷ যদি ওর বাহুর মাপ বাড়ে তার মানে ও বাড়ছে৷ যদি ওর বাহুর মাপ একই থাকে বা কম হয়ে য়ায় তার মানে ওর আরো খাবার দরকার৷স্বাস্থ্য কর্মীকে দিয়ে নিয়মিত চেকআপ করালে আপনি নিশ্চিন্ত হতে পারবেন যে ওর ভালো বিকাশ হচ্ছে৷ কয়েক মাস পর পর ওর ওজন নেওয়ার চেষ্টা করুন সেখানে গিয়ে আপনার যদি কোনো প্রশ্ন থাকে স্বাস্থ্য কর্মীকে জিজ্ঞাসা করে নিতে পারেন৷ 1 বারের ভিজিটে সব প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করে নেওয়ার চেষ্টা করুন৷ এটা আপনার সময় বাঁচাবে৷ গড়ানো মানে হল আপনার শিশু চিৎ হয়ে শুয়ে থাকার অবস্থা থেকে উপুর হয়ে পেটে ভর দিয়ে শুতে পারে বা উপুর হওয়া থেকে আবার নিজে চিৎ হয়ে যেতে পারেযখন ওর 6 বা 7 মাস বয়স হবে তখন হয়ত ও গড়াতে শিখবে ততদিনে ওর ঘাড় ও বাহুর মাংসপেশী যথেষ্ট মজবুত হয়ে যায়৷আপনার শিশুর প্রায় 3 মাস বয়সে আপনি তাকে পেটের উপর ভর দিয়ে শুইয়ে দিলে সে হয়ত হাতে ভর দিয়ে মাথা ও কাঁধ উপরদিকে তুলতে পারবে৷ এটা ওকে গড়ানোর জন্য তৈরী করছে৷আপনার শিশুর সঙ্গে খেলা করে আপনি ওর উৎসাহ বাড়াতে পারেন৷ ওকে পেটের উপর ভর দিয়ে শুইয়ে দিন আর ওর একপাশে একটা খেলনা ধরে দোলাতে থাকুন৷ যদি ও খেলনার দিকে গড়িয়ে যেতে পারে তখন হেসে বলুনসাবাসআপনার শিশু প্রথম কখন গড়াবে তা বলা মুস্কিল৷ নিরাপদ থাকার জন্য একা ওকে কখনো বিছানা বা এমন কোনো জায়গায় রেখে যাবেন না যেখান থেকে পড়ে গিয়ে ওর ব্যাথা লাগতে পারে৷7 মাস বয়স হওয়ার পরেও যদি আপনার শিশু গড়াতে না পারে তাহলে ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলতে পারেন৷ তবে বিশেষ দুশ্চিন্তার কারণ নেই সব শিশুদের শেখার গতি আলাদা আলাদা হয় কয়েকজন বেশি তাড়াতাড়ি শিখে নেয়৷ জিনিস নিয়ে খেলা আপনার শিশুর জন্য মজার ব্যাপার আর এটা তার মানসিক ও শারীরিক দক্ষতা গড়ে তুলতে তাকে সাহায্য করে৷কীভাবে জিনিস হাতে ধরতে হয় সেটা শিখে নেওয়া আপনার শিশুর কাছে একটা পুরো নতুন জগতের দরজা খুলে দেয় এছাড়াও এটা আপনার শিশুর নিজে কাজ করার যেমন খাওয়া দাঁত মাজা পড়া লেখা এবং নানা কাজকর্ম করার প্রথম পদক্ষেপ৷জন্মের সময় থেকেই আপনার শিশুর আঁকড়ে ধরার একটা সহজাত ক্ষমতা থাকে৷ প্রথমে মজাদার জিনিস দেখেই সে খুশী হয় তবে ক্রমশ সে ঐগুলি হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরতে চাইবে৷ প্রায় 3 মাস বয়স থেকে সে এই কৌশল ব্যবহার করতে শুরু করবে৷ আপনার শিশুকে এই কৌশলটা শেখানোর জন্য রঙবেরঙের জিনিসপত্র দিলে ভাল হয় ওর নাগালের মধ্যে জিনিস দোলাতে থাকু দেখুন ও কীভাবে সেটা আঁকড়ে ধরার চেষ্টা করেআবিষ্কারের জন্য নানা আকার প্রকারের জিনিস ও খেলনা দিলে খুব ভালো হয়৷ নরম ও শক্তের প্রভেদ আপনার শিশুর অনুভূতিগুলোকে রোমাঞ্চিত করতে সাহায্য করবে৷ খেলার জন্য ওকে নরম জিনিসে তৈরী সুরক্ষিত খেলনা দিন৷আপনার শিশুর যখন প্রায় 5 মাস বয়স হ‌য় সে জিনিসপত্র মুখে দিয়ে সেগুলি পরীক্ষা করতে শুরু করে৷ এটা স্বাভাবিক আর আপনার শিশুকে শিখতে সাহায্য করেযেসব জিনিস ও খেলনা শিশুর পক্ষে মুখে দেওয়া নিরাপদ তেমন জিনিস বেছে নিন৷ ঐগুলি পরিষ্কার করা সহজ হওয়া উচিত এবং ঐগুলিতে ধারালো কোণা সুতো বা ছোট টুকরো থাকা উচিত না৷ প্রায়ই ঐগুলি পরিষ্কার করে নিন৷ তোমার পেটে ছোট্ট ঢাকের বোলতোমার বাচ্চা এখনও তোমার হাতের তালুতে আঁটার মত ছোট্টটি তার মাথায় চুল গজাচ্ছে আর সারা গায়ে গজাচ্ছে ফিনফিনে নরম লোম আঙুলের ডগায় ছোট্ট ছোট্ট দাগ তৈরি হচ্ছেতোমার গর্ভের ভিতর তোমার বাচ্চা নিরাপদে জলে ভেসে থাকে এই জল বা তরল তাকে গুঁতোগাঁতা থেকে বাঁচায় এবং গরম রাখে বাচ্চাদের হেঁচকি উঠতে পারে তোমার মনে হতে পারে যে পেটের মধ্যে তালে তালে ঢাক বাজছে যা বেশ কয়েক মিনিট ধরে চলতে পারেতোমার বমি বমি ভাব এখন কম হতে পারে আর হঠাৎ ক্ষিদে পেতে পারে ভালো করে খাওয়াদাওয়া করো রোজ মনে করে নানা রকমের খাবার খাবে প্রতিবার খাওয়ার সময় এক মুঠো খাবার বেশি খাও খাবার যেন টাটকা আর ভালো হয় বাসি পুরোনো যেন না হয়আস্তে আস্তে তোমার ক্লান্তি কমে গিয়ে শরীরে মনে বেশি জোর আসবে গর্ভের ভিতরে এখন ফুল তৈরি হয়ে গেছে যেটা তোমার বাচ্চাকে ধরে আছে বাচ্চা জন্মানোর ঠিক পরেই ওটা বেরিয়ে আসবেকোমরে আর বুকের কাছে জামাকাপড় একটু আঁটো লাগতে পারে অল্প দিনের মধ্যেই তোমার গর্ভ দেখতে পাওয়া যাবে তলপেটে একটা ছোট্ট ঢিপির মতন দেখাবেগর্ভবতী অবস্থায় তোমার রোগবীজাণু ঠেকানোর ক্ষমতা কমে যায় তাই তোমার হয়তো বার বার সর্দিকাশি হতে পারে নিয়ম করে পরিষ্কার শুদ্ধ জল আর সাবান দিয়ে হাত ধোও জীবাণু তাড়ানোর জন্য এটাই সবথেকে ভালো উপায় আপনার পরিবারে যদি কারুর যক্ষ্মারোগ (টিবি) থাকে তাহলে প্রত্যেকের পরীক্ষা করানো উচিত৷ টিবি রোগ সহজেই ছড়িয়ে পড়তে পারে তবে সঠিক চিকিৎসার দ্বারা এটা সারিয়ে তোলা যায়৷ চিকিৎসা আপনাকে এবং আপনার শিশুকে সুরক্ষিত রাখবে এবং কয়েকটা সরকারি হাসপাতালে বিনামূল্যে এটা দেওয়া হয়৷আপনার নিজের শরীরে এবং আপনার চারিপাশে প্রত্যেকের টিবির লক্ষণগুলি সম্বন্ধে সতর্ক থাকুন টিবি এমন এক রোগ যা অত্যন্ত বিপজ্জনক হয়ে উঠতে পারে৷ হাঁচি কাশির মাধ্যমে এটা বাতাসে ছড়িয়ে পড়ে৷ অনেকক্ষণ পর্যন্ত এটা বাতাসে থেকে যেতে পারে৷যদি আপনার 2 সপ্তাহের বেশি সময় ধরে কাশি থাকে বা অপ্রত্যাশিতভাবে ওজন কম হয়ে যায় তাহলে স্বাস্থ্য কর্মীর সঙ্গে দেখা করুন৷ আপনার টিবি আছে কিনা তারা পরীক্ষা করে দেখতে পারেন এবং আপনাকে সঠিক ওষুধ দিতে পারেন৷যদি আপনি সব ওষুধ নিয়ে থাকেন তাহলে আপনি টিবি রোগ সম্পূর্ণ নির্মূল করে দিতে পারবেন৷ আপনাকে দেওয়া সব ওষুধ শেষ হওয়ার আগেই যদি সেগুলি নেওয়া বন্ধ করে দেন তাহলে আবার টিবি ফিরে আসতে পারে৷গর্ভাবস্থায় আপনি আরো সহজে টিবিতে আক্রান্ত হতে পারেন৷ ভালো করে খাওয়াদাওয়া করে একটু বেশি যত্ন নেওয়ার চেষ্টা করুন এবং যেখানে খুব বেশি ভিড় এবং যেখানে লোকেদের হাঁচি কাশি হচ্ছে এমন সব জায়গা থেকে দূরে থাকুন৷যদি আপনার পরিবারে কারুর টিবি হয় তাহলে 2 সপ্তাহ ধরে ওষুধ নেওয়ার পরে তারা আর সংক্রামক থাকবেন না৷ হাঁচি কাশির সময় তাদের মুখ ও নাক ঢেকে রাখতে বলুন এবং নিয়মিত হাত ধুতে বলুন৷মনে রাখুন টিবি রোগের দ্রুত চিকিৎসা করা হলে এই রোগ সারিয়ে তোলা যায়৷ মেনোপজ এমন একটি সমস্যা যা পৃথিবীর অর্ধেক মানুয়ের জীবনে সরাসরি প্রভাব ফেলে থাকে আর এর পরোক্ষ প্রভাব পড়ে সবার জীবনেঅনেক মহিলাই তাদের বয়স ৪০ বা ৫০এর কোঠায় পৌঁছানোর পরই এ নিয়ে ভাবতে শুরু করেন কিন্তু তার আগেও মেনোপজ ঘটতে পারেযুক্তরাজ্যে প্রতি ১০০ জন নারীর অন্তত একজনের ৪০ বছরের আগেই মেনোপজ হয়ে থাকে তবে এর প্রকৃত সংখ্যা অনেক বেশি হতে পারেমেয়েদের মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হযে যাওয়াকেই বলে মেনোপজ যা সাধারণত ৫০ বছর বয়সের দিকে ঘটে থাকে মাসিক পুরোপুরি বন্ধ হবার আগের সময়টাকে বলে পেরিমেনোপজ যখন তাদের মাসিক অনিয়মিত হয়ে যায় কখনো খুব বেশি স্রাব হয় এমন কিছু লক্ষণ দেখা দেয় যা আগে ঘটেনিএকনাগাড়ে ১২ মাস মাসিক না হলে একজন নারী পোস্টমেনোপজ স্তরে পৌঁছেছেন বলে ধরা হয় এটা ৪০ বছরের আগে ঘটলে বলা হয় প্রাইমারি ওভেরিয়ান ইনসাফিশিয়েন্সিঅনেকের ক্ষেত্রে কেমোথেরাপি অস্ত্রোপচার বা অন্য কোন চিকিৎসার জন্যও কম বয়সে মেনোপজ হতে পারেযুক্তরাজ্যে প্রতি ১০০ জন নারীর অন্তত একজনের ক্ষেত্রে ৪০ বছরের আগেই মেনোপজ হয়ে থাকে তবে প্রকৃত সংখ্যা এর চেয়ে অনেক বেশি হতে পারেস্বাভাবিক সময়ের আগে মেনোপজ বিষয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি দরকার এক জরিপে বলা হচ্ছে লকডাউনে জীবন কাটাচ্ছেন এমন ৪৮ শতাংশ লোকই বলছেন ঘরে বসে থেকে থেকে তাদের ওজন বেড়ে গেছেবিশেষত সামাজিক মাধ্যমে অনেকেই অভিযোগ করছেন তাদের পেট মোটা হয়ে যাচ্ছেপশ্চিমা দেশগুলোয় কিছু জরিপেও বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করে দেখা হচ্ছে যে লকডাউনের মধ্যে মানুষের ওজন আসলে কতটা বেড়েছেসাম্প্রতিক মাসগুলোতে অনেক জরিপেই দেখা যাচ্ছে যে মানুষের পরিবর্তিত খাদ্যাভ্যাস খাদ্যের প্রাপ্যতা এবং জীবনধারার পরিবর্তন – এগুলো মানুষের ওজনে প্রভাব ফেলছেলন্ডনের কিংস কলেজ এবং ইপসোসমোরির জরিপে অংশ নেয়া ২২৫৪ জন লোকের ৪৮ শতাংশই বলছেন লকডাউনের সময় তাদের ওজন বেড়ে গেছেএকই পরিমাণ লোক বলেছেন তারা এ সময় দুশ্চিন্তা ও বিষণ্ণতায় ভুগেছেন আর ২৯ শতাংশ বলেছেন লকডাউনের সময়টায় তাদের মদ্যপানের পরিমাণ বেড়ে গেছেঅনেকে এ প্রশ্ন করতেই পারেন যে এ ক্ষেত্রে ওজনের চাইতে মানসিক স্বাস্থ্যটাই অপেক্ষাকৃত বড় সমস্যা কিনাস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসপুষ্টিবিদ প্রিয়া টিউ বলছেন মানুষ যখন দুশ্চিন্তা এবং চাপের মুখে পড়ে তখন এটা মোকাবিলা করার জন্য অনেক ক্ষেত্রে তার খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায়তিনি বলছেন লকডাউনে কারো ওজন যদি সামান্য বেড়েও যায় তা নিয়ে দুশ্চিন্তা বা অপরাধবোধে ভোগা উচিৎ নয় তা হলে লকডাউনের আরো নানা দুশ্চিন্তার সাথে এটাও যোগ হয়ে বরং মানসিক চাপ আরো বাড়িয়ে দেবেএ নিয়ে বিশেষজ্ঞরা বলছেন কিছু উপায় আছে যার ফলে আপনি লকডাউনের মধ্যে ওজন বৃদ্ধি নিয়ে খুব বেশি দুশ্চিন্তা না করে বরং শারীরিক ও মানসিক স্বাস্থ্য এ দুটোই আপনি ভালো রাখতে পারবেনপ্রিয়া টিউ বলছেন যেটা করা উচিৎ তা হলো খাদ্য তালিকা থেকে কী বাদ দিতে হবে সে চিন্তা না করে বরং কী যোগ করা দরকার তা নিয়ে ভাবা‍আপনি এভাবে ভাবতে পারেন আমি কি প্রতিদিন যথেষ্ট সব্জি ও ফল খাচ্ছি আমি কি কার্বোহাইড্রেট খাচ্ছি নাকি হোলগ্রেইন খাচ্ছি প্রতিদিন অতিরিক্ত খানিকটা ফল খান মাঝে মাঝে একটুকরো কেক খেলে ক্ষতি নেই‍প্রিয়া টিউ বলছেন একসংগে ১০টি অভ্যাস পরিবর্তন করার বদলে একটি একটি করে শুরু করুন আপনি যদি ভাবেন আমি চকলেট কেক খাবো না তাহলে আরো বেশি খেতে ইচ্ছে করবে কিন্তু তা না খেলে আপনি এর পরিবর্তে এমন একটা কিছু খাবেন যা আপনি আগে খাননিনিজের শরীর সম্পর্কে ধারণার ওপর বিরূপ প্রভাবঅনিশ্চিত সময়ে মানুষের দুশ্চিন্তা বেড়ে যেতে পারে অনেক সময় এর প্রভাব পড়ে খাওয়ার অভ্যাসের ওপরমনোবিজ্ঞানী কিম্বার্লি উইলসন বলছেন খাদ্যের সাথে মানুষের একটা আবেগের সম্পর্ক আছে বহু মানুষই দুশ্চিন্তার সময় অজান্তেই তাদের মনোবল বাড়াতে খাদ্যকে ব্যবহার করেলকডাউনের সময় মানুষ যদি তার স্বাভাবিক খাবার খেতে না পারে শরীরচর্চা করতে জিমে যেতে না পারে তখন তার একটা মানসিক সংকট হয়মিজ উইলসন বলছেন কেউ যদি বলে যে সে লকডাউনের মধ্যে কোন একটা বিশেষ খাবার ছাড়া আর কিছুই খেতে পারছে না তাহলে তাকে বলতে হবে যে ঠিক আছে এতে কোন সমস্যা নেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত সে এভাবেই চলতে পারে' বিশ্বের নানা দেশে করোনাভাইরাস দ্রুতবেগে ছড়িয়ে পড়ছে এবং এখন পর্যন্ত এর কোন প্রতিষেধক বের হয়নিতবে দুর্ভাগ্যবশত করোনাভাইরাস ঠেকাতে নানা ধরণের স্বাস্থ্য পরামর্শ দেখা যাচ্ছে যেগুলো প্রায়ই হয় অপ্রয়োজনীয় নয়তো বিপজ্জনককিন্তু অনলাইনে ছড়িয়ে পড়া এসব পরামর্শ সম্পর্কে বিজ্ঞানীরা কী বলছেনরসুনফেসবুকে এমন অসংখ্য পোস্ট দেখা গেছে যেখানে লেখা যদি রসুন খাওয়া যায় তাহলে সংক্রমণ প্রতিরোধ করা সম্ভববিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা বলছে যদিও রসুন একটা স্বাস্থ্যকর খাবার এবং এটাতে এন্টিমাইক্রোবিয়াল আছে কিন্তু এমন কোন তথ্য প্রমাণ নেই যে রসুন নতুন করোনাভাইরাস থেকে মানুষকে রক্ষা করতে পারেঅনেক ক্ষেত্রেই এধরনের প্রতিকারক ব্যবস্থা মানুষের জন্য ক্ষতিকারক নয় কিন্তু এর মাধ্যমেও ক্ষতি হতে পারেসাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট সংবাদপত্রে খবর বের হয়েছে যে করোনাভাইরাস থেকে রক্ষা পেতে একজন নারী দেড় কেজি কাঁচা রসুন খেয়েছেসম্পর্কিত খবরবাংলাদেশে করোনাভাইরাস শনাক্ত জনসমাগম এড়িয়ে চলার পরামর্শকরোনাভাইরাস গাইড আপনার প্রশ্নের উত্তরএতে করে তার গলায় ভয়াবহ প্রদাহ শুরু হয় পরে ঐ নারীকে হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে হয়আমরা জানি ফল সবজি এবং পানি খেলে স্বাস্থ্য ভাল থাকে কিন্তু নির্দিষ্ট কোন খাদ্য দিয়ে করোনাভাইরাস সংক্রমণ ঠেকানো সম্ভব হবে এর পক্ষে কোন প্রমাণ এখনও পাওয়া যায়নিঅলৌকিক সমাধানজরডান সাথের হলেন একজন ইউটিউবার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্মে তার রয়েছে হাজার হাজার অনুসারীতিনি দাবি করছেন যে একটা অলৌকিক খনিজ পদার্থ যাকে এমএমএস নামে ডাকা হয় সেটা দিয়ে এই করোনাভাইরাস একেবারে দূর করা সম্ভবএটাতে রয়েছে ক্লোরিন ডাইঅক্সাইড যেটা একটা ব্লিচিং এজেন্টমি সাথের এবং অন্যরা এই পদার্থকে করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আগেই প্রচার করে আসছেকিন্তু জানুয়ারি মাসে তিনি টুইট করে বলেন ক্লোরিন ডাইঅক্সাইড ক্যান্সারের কোষকেও ধ্বংস করতে পারে এবং এটা করোনাভাইরাসকে ধ্বংস করতে পারেগত বছরে মার্কিন ফুড এন্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রিশন সতর্ক করে বলে যে এমএমএস পান করা স্বাস্থ্যের জন্য হানিকরঅন্যান্য দেশের স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষও এই বিষয়ে সতর্কতা জারি করেছেএফডিএ বলছে তারা এমন কোন গবেষণা সম্পর্কে জানে না যে এই পদার্থ নিরাপদ অথবা কোন অসুস্থতার জন্য পথ্য হতে পারেএফডিএ সতর্ক করে বলেছে এটা পান করার ফলে মাথাব্যথা বমি ডায়রিয়া এবং পানিশূন্যতার লক্ষণ দেখা দিতে পারেঘরে তৈরি জীবাণুনাশককরোনাভাইরাস ঠেকানোর একটা কার্যকর উপায় হচ্ছে বার বার করে হাত ধোয়াহাত ধোয়ার জেল যেটা দিয়ে তাৎক্ষণিক জীবাণু ধ্বংস করা যায় সেটা ফুরিয়ে যাওয়ার শঙ্কা তৈরি হয়েছেইটালি এখন করোনাভাইরাস আক্রান্ত দেশগুলোর মধ্যে একটিসে দেশে যখন এই জেল ফুরিয়ে যাওয়ার খবর বের হল তখন এই জেল কীভাবে ঘরে বানানো যায় সেটার রেসিপি দেয়া শুরু হল সোশাল মিডিয়াতেকিন্তু সেসব রেসিপি ছিল মূলত সেই সব জীবাণুনাশকের যা ঘরের মেঝে বা টেবিলের উপরিভাগে ব্যবহার করতে হয়কিন্তু বিজ্ঞানীরা জানিয়ে দেন এটা ত্বকের জন্য মোটেই উপযুক্ত নয়অ্যালকোহল যুক্ত হ্যান্ড জেলগুলোতে ৬০৭০ অ্যালকোহল থাকে তার সাথে থাকে এমোলিয়েন্ট নামে এক ধরণের পদার্থ যেটা ত্বককে নরম রাখেলন্ডন স্কুল অব হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক স্যালি ব্লুমফিল্ড বলেছেন তিনি বিশ্বাস করেন না ঘরে বসে হাতের জন্য উপযুক্ত জীবাণুনাশক তৈরি করা সম্ভবরূপার জলকলোইডিয়াল সিলভার মূলত এমন জল যেখানে রুপার ক্ষুদ্র কণিকা মেশানো থাকেমার্কিন টেলিইভানজেলিস্ট ধর্মপ্রচারক জিম বেকার এই জল ব্যবহারের পরামর্শ দিয়েছেনতার অনুষ্ঠানে এক অতিথি দাবি করেন যে এই জল কয়েক ধরণের করোনাভাইরাস মেরে ফেলতে সক্ষমঅবশ্য তিনি স্বীকার করেন যে কোভিড১৯ এর ওপর এটা পরীক্ষা করে দেখা হয়নিকলোইডিয়াল সিলভারের সমর্থকরা দাবি করেন যে এটা অ্যান্টিসেপটিক এবং নানা ধরনের চিকিৎসায় ব্যবহার করা চলেকিন্তু মার্কিন স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ পরিষ্কার ভাষায় বলেছে এই ধরনের রূপা ব্যবহার করে স্বাস্থ্যের কোন উপকার হয় না বরং এর ব্যবহারে কিডনির ক্ষতি হতে পারে ও লোকে জ্ঞান হারাতে পারেতারা বলে লোহা এবং জিংক যেমন মানব দেহের জন্য উপকারী রূপা তেমনটা নয়১৫ মিনিট অন্তর জলপানফেসবুকের একটি অ্যাকাউন্ট থেকে এক পোস্টে একজন 'জাপানি ডাক্তার'কে উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে করোনাভাইরাসের জীবাণু মুখের মধ্যে ঢুকে পড়লেও প্রতি ১৫ মিনিট পর পর পানি খেলে তা দেহ থেকে বের হয়ে যায়এই পোস্টের একটি আরবি ভার্সন ২৫০০০০ বার শেয়ার হয়েছেকিন্তু লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এন্ড ট্রপিক্যাল মেডিসিন বিভাগের অধ্যাপক স্যালি ব্লুমফিল্ড বলেছেন এই দাবির পক্ষে সত্যিই কোন প্রমাণ নেইতাপমাত্রা ও আইসক্রিম পরিহারগরমে এই ভাইরাস মরে যায় বলে সোশাল মিডিয়াতে অনেক ধরনের পরামর্শ দেয়া হচ্ছেগরম পানি পান করা গরম জলে গোসল করা এমনকি হেয়ারড্রায়ার ব্যবহারেরও সুপারিশ করা হচ্ছেইউনিসেফের উদ্ধৃতি দিয়ে এমনি একটি পোস্ট নানা দেশে সোশাল মিডিয়ায় শেয়ার করা হচ্ছেএতে বলা হয়েছে গরম জলপান করলে এবং রৌদ্রের নীচে দাঁড়ালে করোনাভাইরাসের জীবাণু মরে যাবেপাশাপাশি আইসক্রিম খেতেও বারণ করা হয়েছেকিন্তু ইউনিসেফ বলছে এটা স্রেফ ভুয়া খবর ফ্লু ভাইরাস মানব দেহের বাইরে বেঁচে থাকতে পারে নাআর দেহের বাইরে এই জীবাণুকে মেরে ফেলতে হলে ন্যূনতম ৬০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রা লাগবে যেটা গোসলের পানি থেকে অনেক বেশি গরম যদি কারও শরীরে ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমণজনিত রোগ হয় এবং সেই রোগ নিরাময়ে কেউ যদি চিকিৎসকের পরামর্শমত সঠিক পরিমাণে এবং পর্যাপ্ত সময় ধরে অ্যান্টিবায়োটিক গ্রহণ না করেন তাহলে ব্যাকটেরিয়াগুলো পুরোপুরি ধ্বংস না হয়ে উল্টো আরও শক্তিশালী হয়ে উঠতে পারেতখন এই ব্যাকটেরিয়ার বিরুদ্ধে ওই অ্যান্টিবায়োটিক পরে আর কাজ করে নাঅ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োগের পরেও ব্যাকটেরিয়ার এই টিকে থাকার ক্ষমতা অর্জনকে অ্যান্টিবায়োটিক রেজিস্ট্যান্স বলা হয়বাংলাদেশের বিভিন্ন হাসপাতালে সাধারণ রোগ নিয়ে চিকিৎসা নেয়া অনেক মানুষের মধ্যে এই অ্যান্টিবায়োটিক রেসিস্ট্যান্স দেখা দিয়েছে এর ফলে রোগীর আগে যে অ্যান্টিবায়োটিকে রোগ সারতো এখন আর সেটি কাজ করছে না না হলে অত্যন্ত উচ্চ মাত্রার অ্যান্টিবায়োটিক দিতে হচ্ছেএভাবে মানুষের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমে হ্রাস পাচ্ছে বাংলাদেশ অর্থোপেডিক সোসাইটির তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যার তিন শতাংশই অস্টিওপরোসিস বা হাড় ক্ষয় রোগে আক্রান্ত এবং এই রোগে নারীরাই বেশি আক্রান্ত হচ্ছেনচিকিৎসকরা বলছেন এই রোগে আক্রান্তদের অনেকেই তাদের রোগ সম্পর্কে জানেন না এবং আক্রান্তদের সময়মতো সঠিক চিকিৎসা না হলে এমনকি ছয় মাসেই মৃত্যু ঘটতে পারেসোসাইটির গবেষণায় পাওয়া তথ্য অনুযায়ী যদিও তাদের অনেকের জানাই নেই যে তারা হাড় ক্ষয় রোগে আক্রান্ত হয়েছেনবঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিজিক্যাল মেডিসিন ও রিহ্যাবিলিটেশন বিভাগের অধ্যাপক একেএম সালেক বলছেন ৫০ বছর বয়সী যারা এ রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন তাদের প্রতি দশজনের নয়জনই নারী তবে ৭০ বছর বয়সীদের মধ্যে পুরুষের সংখ্যা কিছুটা বেড়ে সাধারণত এ অনুপাত হয় ৬৪ বা ৭৩অনেকদিন ধরে হাড় ক্ষয় রোগে আক্রান্ত রোমেনা আখতার বলছেন দীর্ঘদিন পিঠ ব্যথায় ভোগার পর পরীক্ষায় নিরীক্ষায় ধরা পড়ে যে তিনি হাড় ক্ষয় রোগে আক্রান্তঅনেক দিন ধরেই পিঠে ব্যথা ব্যথা উঠলে কাজ কর্ম করতে পারতাম না ব্যথার ঔষধ খেতাম কিছুক্ষণ ভালো আবার খারাপ পরে ডাক্তার টেস্ট করে বললো হাড় ক্ষয় ঔষধ খাচ্ছি আর ডাক্তারের পরামর্শ মতো রোদে যাই একটু পরিশ্রম করার চেষ্টা করি বিবিসি বাংলাকে বলছিলেন তিনিচিকিৎসকরা বলছেন তাদের ধারণা আগামী পাঁচ বছরে ননকমিউনিকেবল যেসব রোগে মানুষ বেশি আক্রান্ত হয় তার মধ্যে শীর্ষ পাঁচে এই হাড় ক্ষয় রোগ উঠে আসবেহার্ট স্ট্রোক ডায়াবেটিস ও ফুসফুসের সমস্যার পর হাড় ক্ষয় রোগে আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা বেশি হবে বলে আমরা ধারণা করছি বলছিলেন মিস্টার সালেক শব্দ দূষণে শরীরে যে অঙ্গটি সবচেয়ে প্রথম আক্রান্ত হয় সেটি হল কান এবং শ্রবণশক্তি বলছিলেন জাতীয় নাক কান গলা ইন্সটিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক মুহাম্মদ আবু হানিফতিনি বলছেন কানের ভেতরে রিসেপ্টর প্রথমে শব্দ তরঙ্গকে ধারণ করে তারপর ককলিয়ার নার্ভের মাধ্যমে মস্তিষ্কে পাঠায় দীর্ঘদিন অতিরিক্ত শব্দ এই রিসেপ্টরকে ক্ষতিগ্রস্ত করে ক্রমাগত যারা অনেক শব্দের মধ্যে থাকেন তারা ধীরে ধীরে শ্রবণশক্তি হারাতে থাকেন অনেকে টেরও পান না যে তারা ধীরে ধীরে কানে কম শুনছেনইউএনইপির প্রতিবেদনে বাংলাদেশের দুটি শহরের কথা উল্লেখ করা হয়েছে ঢাকায় বাণিজ্যিক এলাকায় গড়ে শব্দের মাত্রা ১১৯ এবং রাজশাহীতে ১০৩ ডেসিবল যা একজন মানুষের কানের সহ্য ক্ষমতার অনেক বেশিঅধ্যাপক হানিফ বলছেন একজন মানুষ সাধারণত ৪০ ডেসিবল শব্দে কথা বলে যাকে বলা হয় বাড়ির ভেতরের শব্দ সেটিই কানের জন্য সুস্থ মাত্রার শব্দ মানুষের কান ৭০ ডেসিবল পর্যন্ত শব্দ সহ্য করতে পারে মানুষের ঘরের ভেতরে ব্যবহৃত হয় এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থ পুরুষের প্রজনন স্বাস্থ্যের ওপর কী প্রভাব ফেলছে – তা নিয়ে গবেষণা করছেন যুক্তরাজ্যের নটিংহ্যাম বিশ্ববিদ্যালয়এই প্রভাব বোঝার জন্য তিনি কাজে লাগাচ্ছেন গৃহপালিত কুকুরকে কারণ গৃহপালিত প্রাণী হিসেবে সেই কুকুর একই বাড়িতে থাকছে এবং একই দূষণকারী রাসায়নিক পদার্থের সংস্পর্শে আসছেরেবেকা গবেষণা করছেন প্লাস্টিক আগুনরোধী রাসায়নিক এবং ঘরের অন্যান্য নিত্যব্যবহার্য সামগ্রী নিয়েএসব রাসায়নিক পদার্থের কিছু কিছু নিষিদ্ধ কিন্তু পরিবেশে এবং পুরোনো জিনিসপত্রের মধ্যে তার অবশেষ রয়ে গেছেতার গবেষণায় দেখা গেছে এসব রাসায়নিক পদার্থ আমাদের হর্মোন সিস্টেমকে বিঘ্নিত করতে পারে এবং মানুষ ও কুকুর উভয়ের ক্ষেত্রেই উর্বরতা কমিয়ে দিতে পারেরেবেকা ব্ল্যানচার্ড বলছেন আমরা মানুষ এবং কুকুর উভয়েরই শুক্রাণুর নড়াচড়ার ক্ষমতা কমে যাওয়ার তথ্য পেয়েছি তা ছাড়া তার ডিএনএ ভেঙে যাওয়ার পরিমাণও বেড়ে যেতে দেখেছিডিএনএ ভেঙে যাওয়া বলতে তিনি বোঝাচ্ছেন যেসব জিনগত সামগ্রী দিয়ে শুক্রাণু তৈরি তা ক্ষতিগ্রস্ত হওয়া বা ভেঙে যাওয়াএর ফলে গর্ভধারণের পরও নানা সমস্যা দেখা দিতে পারেরেবেকা ব্ল্যানচার্ড বলছেন ডিএনএ ভেঙে যাওয়ার পরিমাণ যদি বেড়ে যায় তাহলে গর্ভধারণের প্রথম কয়েক মাসের মধ্যে মিসক্যারেজ বা ভ্রুণ নষ্ট হয়ে যাওয়ার ঘটনাও বেড়ে যায়তার এই তথ্যের সাথে অন্যান্য গবেষণায় প্রাপ্ত তথ্যের মিল আছে ওই গবেষণাগুলোতে দেখা গেছে যে প্লাস্টিক সাধারণ নানা ওষুধ খাদ্য এবং বাতাসে উপস্থিত রাসায়নিক পদার্থ উর্বরতার ক্ষতি ঘটাতে পারেএগুলো শুধু পুরুষ নয় নারী ও শিশুদের দেহেও বিরূপ প্রভাব ফেলছেকার্বন এবং কখনোই নষ্ট হয় না এমন কিছু রাসায়নিক পদার্থের অস্তিত্ব এমনকি গর্ভস্থ শিশুর দেহেও পাওয়া গেছে বাংলাদেশ মেনোপজ সোসাইটির তথ্যমতে এদেশে নারীদের মনোপজের গড় বয়স ৫১ বছরমেনোপজের বয়স প্রতিটি নারীর ক্ষেত্রে ভিন্ন মেনোপজের প্রক্রিয়াটি কয়েক বছর ধরে ধীরে ধীরে ঘটেসাধারণত ৪৫ থেকে ৫৫ বছর বয়সের মধ্যে নারীদের মেনোপজ হয়ে থাকে অনেক সময় এই বয়সের মধ্যে থেমে থেমে কয়েক মাস পরপর ঋতুস্রাব হতে পারেঅনেক সময় কোন অস্ত্রোপচারের কারণে যদি কোনও নারীর দুটো ওভারি অথবা জরায়ু ফেলে দিতে হয় তাহলেও হঠাৎ মেনোপজ হয়ে যায়তবে একটানা ১২ মাস যখন ঋতুস্রাব বন্ধ থাকে তখন সেটিকে চিকিৎসকেরা মেনোপজ বলে থাকেনবাংলাদেশ মেনোপজ সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক গুলশান আরা বলছেন মেনোপজের ফলে নারীর শরীরে যে পরিবর্তনগুলো হয় তার পেছনে মূল কারণ ইস্ট্রোজেন নামের একটি হরমোন যা নারীর শরীরের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণতিনি বলছেন ইস্ট্রোজেন নারীদের নানাভাবে প্রটেকশন দেয় যেমন নারীর মেনোপজের আগে পুরুষের চেয়ে হার্ট ডিজিজ কম হয় এবং ইস্ট্রোজেনের জন্যেই কিন্তু যখনই তার মেনোপজ হয় তখন কিন্তু নারী ও পুরুষ হার্ট ডিজিজের সমান সমান রিস্কে থাকে ইস্ট্রোজেন হরমোন নারীর প্রজনন গ্রন্থিকে তো প্রোটেকশন দেয়ই ইস্ট্রোজেন নারীর মানসিক স্বাস্থ্যেও প্রভাব ফেলে তাছাড়া ইস্ট্রোজেন নারীর হাড়ের জন্য ভাল ইস্ট্রোজেন হরমোন নারীর শরীরে আরও অনেক কাজ করেগুলশান আরা বলছেন তার কাছে মেনোপজ নিয়ে কথা বলতে আসেন এমন নারীর সংখ্যা খুবই বিরলমেনোপজের ফলে ইস্ট্রোজেন হরোমন কমে যাওয়ায় নারীর শরীরে আর কি ঘটে সে সম্পর্কে আরো বিস্তারিত ধারনা দিলেন তিনিমেনোপজের কারণে ইস্ট্রোজেন হরমোন কমে গেলে সবচেয়ে প্রথমে যেটা ঘটে সেটা হল হটফ্লাস দিনের মধ্যে কয়েকবার হঠাৎ করে খুব গরম লাগে মুখ লাল হয়ে যায় ঘেমে যায় এছাড়া অনেক কিছু ভুলে যাওয়া খুব ছোটখাটো বিষয়ে আবেগপ্রবণ হয়ে কেঁদে ফেলাঅনেকে প্রস্রাব ধরে রাখতে পারে না একটু হাঁচি কাশি দিলে প্রস্রাব পড়ে যায় যোনিপথ শুকিয়ে যায় জ্বালাপোড়া হয় আর ইস্ট্রোজেন না থাকার আর একটা দীর্ঘমেয়াদি এফেক্ট হল অস্টিওপোরোসিস এটি মেনোপজ পরবর্তী সবচেয়ে জটিল সমস্যাগুলোর একটি এটি হাড়ের ক্ষয়জনিত একটি রোগমেনোপজ পরবর্তী সময়ে নারীরা অস্টিওপোরোসিসের বেশি ঝুঁকিতে থাকেন পুরুষের চেয়ে নারীর হাড়ের পুরুত্ব কমইস্ট্রোজেন তাকে এ থেকে নিরাপত্তা দেয় কিন্তু শরীরে মেনোপজের পর ইস্ট্রোজেন হরমোনের নিরাপত্তা কমে যায়এর কোন উপসর্গ থাকে না কিন্তু খুব অল্পতেই হাড় ভেঙে যেতে পারেনারীর শরীরে পর্যাপ্ত ক্যালসিয়াম এবং কায়িক পরিশ্রমের অভ্যাস না থাকলে মেনোপজ পরবর্তী সময়ে অস্টিওপোরোসিস জটিল আকার ধারণ করতে পারেএছাড়া ঘুম না হওয়া উদ্বেগ মনমরা ভাব এবং যৌন মিলনে আগ্রহ কমে যাওয়া মেনোপজ পরবর্তী কয়েকটি অভিজ্ঞতাসকল নারীর অভিজ্ঞতা অবশ্য একরকম নয় মাসিক শুরু হলে যেমন নারীর শরীরে আমূল পরিবর্তন ঘটে সেটি বন্ধ হয়ে গেলেও বদলে যায় অনেক কিছুচিকিৎসকেরা বলেন মেনোপজের জন্য আগেভাগে একজন নারীর প্রস্তুতি দরকারকিন্তু বাংলাদেশে নারীদের মেনোপজের প্রভাব নিয়ে কথা বলতে যেমন দেখা যায় না এর জন্য কোন প্রস্তুতিও তারা নেন না এবং কোন সমস্যা হলে নীরবেই তা সহ্য করেনবাংলাদেশে মেনোপজ বিষয়ে অনেক নারীর জ্ঞান বেশ সীমিত বলে মনে হয়মেনোপজ মানে মাসিক বন্ধ হয়ে যাওয়া এর বাইরে তেমন কোন তথ্য তাদের জানা নেইআর চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার ক্ষেত্রে নারীরা সাধারণত স্বামী অথবা পরিবারের অন্য কোন সদস্যের উপর নির্ভরশীলঅন্য কোন শারীরিক সমস্যার ক্ষেত্রে যেমন মেনোপজের ক্ষেত্রে বিষয়টি চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার মতো গুরুত্বপূর্ণ মনে করা হয় না যদি না তা বড় কোন শারীরিক সমস্যা সৃষ্টি করেপ্রজনন স্বাস্থ্য বিষয়ে বাংলাদেশের গ্রামাঞ্চলে গবেষণা করেছেন ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের জেমস পি গ্র্যান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথের অধ্যাপক আফসানা কাওসারতিনি বলছেন পশ্চিমা বিশ্বে মেনোপজ নারীদের জন্য অনেক বড় ইস্যুতাদের কাছে যৌনতা একটা গুরুত্বপূর্ণ বিষয় অনেকে চেহারায় মেনোপজের ছাপ পড়লে অর্থাৎ মেনোপজের কারণে সৌন্দর্য কমে গেলে তারা ছবি পর্যন্ত তুলতে চান না সেখানে হরমোন রিপ্লেসমেন্ট থেরাপি হয় অনেক কিছু করেন নারীরা তারা এটি নিয়ে কথা বলেনতার ভাষায় বাংলাদেশে নারীর জীবনের পরবর্তী ধাপ যেমন সে শাশুড়ি নানী ও দাদী হয়ে উঠবেসন্তান জন্মদান যৌনতা সৌন্দর্য শরীরের এই দিকগুলো তার জন্য গৌণ হয়ে উঠবে সেটি সামাজিকভাবে ঠিক করে করে দেয়া থাকেএর উপর নির্ভর করে এই অঞ্চলে মেনোপজের প্রতি মনোভাব গড়ে উঠেছে বলে তিনি মনে করেনএই অঞ্চলের কথা বলি দক্ষিণ এশিয়া অঞ্চল এখানে নারীর এই শারীরিক পরিবর্তনটা খুব প্রাকৃতিক পরিবর্তন হিসেবে গ্রহণ করা হয় যুগ যুগ ধরে এটা খুব ন্যাচারালভাবে চলে এসেছেএখানে নারীরা বাড়িতে থাকেন সংসার সন্তান এসব দেখভাল করে থাকেন একটা সময় নাতি নাতনির দায়িত্ব তার উপরে আসে নারী কোন সময়ে থেমে নেই তার জীবন চলমান জীবন এমন চলমান জীবনে সে তার এই পরিবর্তনটা অনেক সময় বুঝতেই পারে না কিন্তু সমস্যাটি যদি হয় যৌনতা বিষয়ক তাহলে সে নিয়ে এখানে কথা বলা রীতিমতো অস্বাভাবিক ব্যাপারযৌনতায় নারীর আগ্রহ থাকলে সেটি সমাজের পছন্দ নয় যৌনতা নিয়ে নারী এদেশে কথা বলে খুব কমমেনোপজের পর প্রায়শই দাম্পত্য জীবনে যৌনতায় সমস্যা হবে বলে ধারণা করা হয়যোনিপথ শুকিয়ে যাওয়াকে সেজন্য অনেকে দায়ী করেনতবে চিকিৎসকেরা বলেন এটি ভ্রান্ত ধারনা নারীরা অনেকে যৌনতায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন বলে বলে মনে করা হয়অনেক নারী মনে করেন স্বামী হয়তো তাকে আর আগের মতো ভালবাসবেন না তার নারীত্ব হারিয়ে যাবে এসব চিন্তার কারণে মেনোপজ হওয়ার পর নারীরা অনেকেই আশা হারিয়ে ফেলেন অবসাদগ্রস্ত হয়ে পড়েন নারীত্বের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটা ব্যাপার হল সন্তান ধারণের ক্ষমতা এর সাথেই মাসিকের সম্পর্ক মাসিকের সাথে আর একটা যে ব্যাপার খুব গুরুত্বপূর্ণ সেটি হল যৌনতা অনেক নারীর মনের মধ্যে একটা ভয় থাকে যে সে বোধহয় সেক্সুয়ালি আর আগের মতো পারফর্ম করতে পারবে নাএছাড়া একজন নারী অনেক দিন ধরে একটি শারীরিক অভিজ্ঞতার সাথে বসবাস করেন কিন্তু মেনোপজের মাধ্যমে তিনি নতুন একটা ধাপে প্রবেশ করেন তার শরীরের অনেক বড় একটি পরিবর্তন ঘটে সেই সাথে তার জীবনেও অনেক বড় একটি রূপান্তর ঘটে অনেকের এসব আমূল পরিবর্তনের সাথে মানিয়ে নিতে সমস্যা হয়ডা মেখলা সরকার বলছেন দেখা যায় কোন সমস্যা না থাকলেও ইনসিকিউরিটি থেকে সমস্যাটা আসলেই দেখা দেয় এবং এদেশে অনেক নারী যৌনতায় আগ্রহ হারিয়ে ফেলেন ৩০ বছর বয়স থেকে কিছু বিষয় মেনে চললেই ইস্ট্রোজেন কমে গেলে যে সমস্যাগুলো হয় তার প্রভাব অতটা মারাত্মক হয় না প্রতিটি নারীর মেনোপজ সম্পর্ক সচেতন থাকা প্রয়োজন এটা সুসম খাবার গ্রহণ নিয়মিত ব্যায়াম কায়িক পরিশ্রম ও জীবনে অ্যাক্টিভ থাকার উপর নির্ভর করে একদম শুরু থেকে যদি আমরা লাইফস্টাইলটা এরকমভাবে তৈরি করি খাবার যদি সুসম হয় সচেতনতা থাকে তখন অনেক ভালোভাবে অ্যাডাপ্ট করা যায় জটিলতাগুলো কম হয়জটিলতাগুলো কমানোর আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ ধাপ হল বিষয়টি নিয়ে কথা বলাবয়ঃসন্ধিকালে একটা সময় হলে মেয়েদের ঋতুস্রাব শুরু হওয়াটাই যেমন স্বাভাবিক ঠিক তেমনি একটি বয়সের পর পুরোপুরি মাসিক ঋতুস্রাব বন্ধ হয়ে যাওয়াও নারীর শরীরের জন্য প্রাকৃতিক নিয়ম নামই সম্ভবত বলে দেয় এই অসুখটি হলে আসলে কি ঘটে একজন ব্যক্তির যকৃতে দরকারের চাইতে বেশি চর্বি জমে গেলে সেটিকে ফ্যাটি লিভার ডিজিজ বলা হয়যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সেবা সংস্থা এনএইচএস বলছে যকৃতে কিছুটা চর্বির উপস্থিতি থাকা স্বাভাবিক কিন্তু একজন ব্যক্তির যকৃতের যে ওজন তার ১০ শতাংশের বেশি যদি চর্বি হয় তখন সেটিকে ফ্যাটি লিভার হিসেবে বিবেচনা করা হয়সংস্থাটি বলছে যাদের শরীরের ওজন স্বাভাবিকের চাইতে বেশি তাদের মধ্যে এর প্রবণতা বেশি বিশেষ করে যাদের শরীরের মাঝখানের অংশে পেটে অনেক চর্বি রয়েছে তাদের ক্ষেত্রে এই ধরনের ব্যক্তিদের শরীরকে আপেল আকৃতির শরীর হিসেবে বর্ণনা করেছে এনএইচএসএছাড়া যাদের টাইপ২ ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ রক্তে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল থাইরয়েডের সমস্যা পলিসিস্টিক ওভারি রয়েছে তাদের ঝুঁকি বেশিকিন্তু এসব অসুখ নেই এমন ব্যক্তির ক্ষেত্রেও ফ্যাটি লিভার ধরা পড়ছে এমনকি শিশুদের মধ্যেও এটি পাওয়া যাচ্ছে বলে জানাচ্ছে এনএইচএসএক সময় বলা হতো এটি মদ্যপায়ীদের অসুখ অতিরিক্ত অ্যালকোহল পানের কারণে লিভারে যেসব অসুখ ধরা পড়ে তার সাথে এটির মিল থাকলেও অ্যালকোহলের সাথে একদমই কোন সম্পর্ক নেই এমন ব্যক্তিদের মধ্যেও এর প্রবণতা গত কয়েক দশক ধরে বাড়ছেতাই এর আলাদা নাম দেয়া হয়েছে ননঅ্যালকোহলিক ফ্যাটি লিভার ডিজিজ ঢাকার শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক পরিপাকতন্ত্র ও লিভার রোগ বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক ফারুক আহমেদ বলছেন দীর্ঘদিন কারও ফ্যাটি লিভার থাকলে লিভার ধীরে ধীরে ক্ষতিগ্রস্ত হতে থাকে এর ফলে যকৃতে ফাইব্রোসিস ক্যান্সার লিভার সিরোসিস হয়ে থাকেতিনি বলছেন প্রাথমিক পর্যায়ে এর কোন লক্ষণ নেই একদম শুরুতে কোন সমস্যা হয় না তাই রোগীরা বুঝতে পারে না অন্য কোন সমস্যার কারণে চিকিৎসকের কাছ গেলেই বেশিরভাগ সময় এটি ধরা পড়ে এর জন্য আল্ট্রাসনোগ্রাম ও রক্ত পরীক্ষা করার প্রয়োজন হয় তবে এর পরের ধাপগুলোতে লক্ষণ শুরু হয়সেগুলো সম্পর্কে ধারণা দিয়ে তিনি বলছেন পেটের উপরের ডান দিকে বুকের খাঁচার নিচে ডান দিকে ভারি লাগবে একটা ব্যথা হবে ক্লান্ত ও দুর্বল লাগবে সব সময় ওজন কমতে থাকবে যার কোন ব্যাখ্যা নেই যদি খুব খারাপ পর্যায়ে চলে যায় তাহলে চোখের সাদা অংশ ও ত্বক হলুদাভ হয়ে যাবে জন্ডিস হবে ত্বকে চুলকানি দেখা দিতে পারে পেট গোড়ালি পা ফুলে যাবে রক্ত বমি কালো পায়খানা হবে এগুলো খুব অ্যাডভানস স্টেজে হয় অধ্যাপক আহমেদ বলছেন পশ্চিমা বিশ্বে এর প্রবণতা অনেক বেশি হলেও আমরা ইদানীং দেখছি আমাদের কাছে ফ্যাটি লিভার নিয়ে আগের চেয়ে অনেক বেশি রোগী আসছেন এমনকি গ্রামের মানুষ তাদেরও এটি হচ্ছে আমরা ভাবি যে শহরের মানুষ মোটা হয়ে থাকে আর গ্রামের মানুষ কায়িক পরিশ্রম করে বেশি তাই তাদের ওজন কম কিন্তু আমাদের নিজেদের গবেষণা আছে এমনকি গ্রামেও অনেকের ফ্যাটি লিভার পেয়েছি আমরাঅধ্যাপক আহমেদ জানিয়েছেন বাংলাদেশে কুড়ি শতাংশ জনগোষ্ঠীর ফ্যাটি লিভার রয়েছেক্যান্সারে কেমোথেরাপি কতটা কাজে লাগেঢাকা জেলার নবাবগঞ্জ ও দোহার উপজেলায় শেখ রাসেল গ্যাস্ট্রোলিভার ইন্সটিটিউট ও হাসপাতালের করা একটি গবেষণার কথা উল্লেখ করে তিনি বলছেন সেখানে তেইশ শতাংশ নারী এবং কুড়ি শতাংশ পুরুষদের মধ্যে ফ্যাটি লিভার পাওয়া গেছে তিনি বলছেন শহরে এর প্রবণতা তিরিশ শতাংশের মতোঅধ্যাপক আহমেদ বলছেন এই মানুষগুলোই ভবিষ্যতে লিভার সিরোসিসের মতো অসুখ নিয়ে আমাদের কাছে আসবে যুক্তরাষ্ট্রের জন হপকিনস মেডিসিন বলছে এটি এমন এক রোগ যা নীরবে লিভার বা যকৃতের স্বাস্থ্য ক্ষতিগ্রস্ত করে আর লিভারের স্বাস্থ্যের উপর নির্ভর করে শরীরের গুরুত্বপূর্ণ অন্য সকল অঙ্গের সুস্থতাজন হপকিনস মেডিসিন বলছে ফ্যাটি লিভার সারিয়ে তোলার কোন ঔষধ নেই কিন্তু লিভারের নিজেকে সারিয়ে তোলার দারুণ ক্ষমতা রয়েছেসেজন্য অবশ্য দরকার জীবনাচরণ পরিবর্তন করা লিভারে চর্বি জমার কারণগুলো নির্ণয় করে তা নিয়ন্ত্রণের মাধ্যমে এর খারাপ পর্যায় পর্যন্ত পৌঁছানো প্রতিরোধ করা যায়সাবধান হওয়ার জন্য ফারুক আহমেদ বলছেন যাদের এর ঝুঁকি বেশি মানে যাদের ওজন বেশি ডায়াবেটিস উচ্চ রক্তচাপ রক্তে উচ্চ মাত্রার কোলেস্টেরল তাদের নিয়মিত এর জন্য আল্ট্রোসনোগ্রাম করা উচিৎ তাদের এটা করতেই হবেএছাড়া তিনি বলছেন জীবনাচরণ পরিবর্তন করার জন্য পরিমিত সুষম খাবার সময়মত খাওয়া পর্যাপ্ত ফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া কায়িক পরিশ্রম করে বাড়তি চর্বি শরীর থেকে ঝড়িয়ে ফেলা খুব জরুরিভাজাপোড়া খাবার সকল প্রকার ফাস্টফুড বর্জন করা ফাস্টফুডে অতিরিক্ত ক্যালোরি থাকে কিন্তু শরীরের জন্য দরকারি অন্য পুষ্টিগুণ অনেক কম থাকে তাই ফাস্টফুড শরীরের ওজন বাড়ায়পর্যাপ্ত পানি খাওয়া নিয়ম করে ঘুমানোর অভ্যাস এভাবে জীবনাচরণ পরিবর্তন করা এবং ফ্যাটি লিভারের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য শারীরিক সমস্যার চিকিৎসা বা নিয়ন্ত্রণ করার কথা বলছেন তিনিকেউ যদি পরিমিত খাবারের চেয়ে বেশি খায় আপনার দরকার বারোশ ক্যালোরি কিন্তু খেলেন দুই হাজার আবার শুধু শর্করা জাতিয় খাবারই বেশি খেলেন বা অতিরিক্ত মাংস খেলেন কিন্তু কোন শারীরিক পরিশ্রম করলেন না তাহলে কিন্তু সমস্যা বলছিলেন অধ্যাপক আহমেদ মোটা হবার জন্য নির্দিষ্ট দুয়েকটি গ্রুপের খাদ্য মানে কার্বোহাইড্রেট বা চর্বি জাতীয় খাবার বেশি খান অনেকে তাতে শরীরের ক্ষতি হয়বরং সব খাদ্য উপাদান রয়েছে এমন খাবার খেতে হবে এজন্য পুষ্টিবিদের পরামর্শ নিনকার্বোহাইড্রেট বা শর্করা প্রোটিন ভিটামিন চর্বি দুধ ও দুধজাতীয় খাবার এবং খনিজ উপাদানসমৃদ্ধ ফলমূল রাখুন খাদ্য তালিকায়সাথে প্রচুর পানি পান করতে হবেসাধারণ নিয়ম হচ্ছে একজন মানুষের উচ্চতার অর্ধেক লিটারে পরিমাপ করে পানি পান করতে হবে খাবারের সময় ঠিক রাখুনঅর্থাৎ সকালের নাস্তা সময়ের অভাবে খেতে পারলেন না দুপুরে খেতে ইচ্ছে করলো না কিংবা রাতে একেকদিনে একেক সময়ে খাবার খাচ্ছেন এসব সুস্থ শরীরের জন্য একেবারেই অনুচিতফলে ওজন বাড়াতে চাইলে বা কমাতে চাইলে এই নিয়ম সবার জন্যই একতা হচ্ছে সময়মত খেতে হবেবড় কোন অসুবিধা না থাকলে প্রতিদিন একই সময়ে খাবার খাওয়ার পরামর্শ দেন পুষ্টিবিদেরা মোটা হওয়ার জন্য কোন ওষুধের সাহায্য নেবার প্রয়োজন নাই কোন ভিটামিন বা অন্য কোন খাদ্য উপাদানের সাপ্লিমেন্ট গ্রহণ করতে হলে চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে করুন পিৎজা বার্গার বা কেকপ্যাস্ট্রি ইত্যাদি খাবার অনেকে ওজন বাড়ানোর জন্য কার্যকর ভেবে খান সাথে অনেকে ভাজাপোড়া খান কিন্তু এসব শরীরের ক্ষতি করে জাঙ্ক ফুড বা প্রক্রিয়াজত খাবার শরীরের জন্য ক্ষতিকর মোটা হওয়ার জন্য অনেকে স্টেরয়েড জাতীয় ওষুধ চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া খেয়ে থাকেন এর ফলে শরীরের নানারকম জটিলতা দেখা দিতে পারে যা নিয়ে সারাজীবনের জন্য ভোগান্তিতে পড়তে পারেন শুকনা বলে লোকে ঠাট্টা করলেও মনে রাখবেন সুস্থতা জরুরি সেজন্য ওজন কম হলে হীনম্মন্যতায় ভুগবেন না করো কারো জিনগত কারণেও ওজন কম থাকে হয়ত চেষ্টা করেও মোটা হতে পারেন না অনেকে ফলে ভালো দিকটি মাথায় রেখে সন্তুষ্ট থাকুন যুক্তরাজ্যের জাতীয় স্বাস্থ্যসেবা এনএইচএস বলছে সাধারণভাবে মাথার চুল পড়ে যাওয়াকে চিকিৎসা শাস্ত্রের ভাষায় অ্যালোপেশিয়া বলেসত্তর বছর বয়সী নারীদের অন্তত ৪০ শতাংশ এ রোগে ভোগেন যাতে দেখা যায় তাদের মাথার সামনের অংশের চুল পাতলা হয়ে গেছে খাবারের টেবিলে অনেকেরই পাতে অতিরিক্ত লবণ নেয়া বা চায়ের বাড়তি চিনি নেয়ার অভ্যাস রয়েছে কিন্তু স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন স্বল্প মাত্রার এরকম কাঁচা লবণ বা চিনি আপনার স্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ঝুঁকি তৈরি করছেমানবদেহের জন্য লবণ বা চিনির প্রয়োজন রয়েছে কিন্তু তার মাত্রা রয়েছেমানুষ প্রতিদিন যে নানা ধরনের খাবার গ্রহণ করে থাকে তার ভেতরেও লবণ বা চিনির উপস্থিতি থাকে একজন মানুষের প্রতিদিন যতটা লবণ বা চিনি খাওয়া উচিত খাবার থেকেই অনেক সময় তার চেয়ে বেশি শরীরে প্রবেশ করেফলে যখন কোন মানুষ খাবার টেবিলে বা চায়ের সঙ্গে বা অন্য কোন ভাবে বাড়তি লবণ বা চিনি গ্রহণ করে সেটা তার জন্য ঝুঁকির মাত্রা আরও বাড়িয়ে দেয় মানুষের শরীরে যত সোডিয়াম ঢোকে তার প্রধান উৎস লবণযুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন (এফডিএ) বলছেন মানুষের দেহ ঠিকভাবে কাজ করার জন্য খুব কম পরিমাণ লবণ দরকার হয় কিন্তু মানুষ প্রতিদিন সেই মাত্রার চেয়ে অনেক বেশি লবণ গ্রহণ করছেসংস্থাটি বলছে একজন মানুষের বমিলিয়ে ২৩০০ মিলিগ্রাম বা এক চা চামচের বেশি লবণ খাওয়া উচিত নয়পুষ্টিবিদ ফারজানা আহমেদ বিবিসি বাংলাকে বলছেন মানুষের শরীরে সোডিয়াম ক্লোরাইডের বয়স অনুযায়ী চাহিদা আছে কিন্তু কারও যদি লিভার কিডনি বা বড় জটিলতা থাকে তখন সেটার বেশি বা কম হলে সমস্যা তৈরি করতে পারে''আমরা সরাসরি লবণ খেতে একেবারেই মানা করে দেই কিন্তু নানা খাবারের মধ্য দিয়ে একজনের শরীরে যতটুকু লবণ যাবে তা যেন আধা চা চামচ থেকে এক চা চামচের বেশি না হয়'' তিনি বলছেনযুক্তরাষ্ট্রের সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল বা সিডিসির তথ্য অনুযায়ী অতিরিক্ত লবণ রক্তচাপ হৃদরোগ এবং স্ট্রোকের সম্ভাবনা অনেক বাড়িয়ে দিতে পারেবিশেষ করে প্রক্রিয়াজাত খাবার অথবা রেস্তোরাঁয় খাবারে যে লবণ থাকে সেটা নিয়ন্ত্রণের কোন উপায় থাকে না সিডিসির তথ্য অনুযায়ী আমেরিকানরা যত লবণ গ্রহণ করে থাকে তার ৪০ শতাংশের বেশি আসে নীচের খাবারগুলো থেকেমাংসের স্যান্ডউইচপিৎজাট্যাকোসসুপচিপস ক্র্যাকার্স পপকর্নফ্রেঞ্চ ফ্রাই বা চিকেন ফ্রাইপাস্তাবার্গারডিম ভাজা বা ডিমের নানা ভাজি আইটেমকিন্তু এসব খাবারেও বিভিন্ন স্থানে লবণের মাত্রার কমবেশি হতে পারে তবে লবণ ছাড়াও বেকিং সোডা মনোসোডিয়াম গ্লুটামেট সোডিয়াম নাইট্রেটের মাধ্যমেও মানুষের দেহে সোডিয়াম প্রবেশ করে সব মিলিয়ে সোডিয়ামের মাত্রা বেড়ে গেলেও স্বাস্থ্যের ঝুঁকি তৈরি হয়তাই এফডিএ খাবার কেনা বা খাওয়ার পূর্বে সেটার গায়ে থাকা লেবেল দেখে নেওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেতবে সবসময়ে যে লবণের মাত্রা দেখেই সোডিয়ামের উপস্থিতি বোঝা যায় তা নয় আচার বা সয়া সসের ভেতর সোডিয়ামের উপস্থিতি সহজে বোঝা যায় কিন্তু সেরিয়াল এবং প্যাস্ট্রির ভেতরেও সোডিয়াম থাকে যদিও সেটা হয়তো টের পাওয়া যায় না যুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বলছে খাবারের ভেতরে থাকা লবণ সম্পর্কে সচেতন হওয়া এবং খাবার তৈরির নতুন উপায় বের করার মাধ্যমে শরীরের সোডিয়ামের মাত্রা ঠিক রাখা যেতে পারে এজন্য তারা কিছু পরামর্শ দিয়েছে এসব পরামর্শ অনুসরণ করে আস্তে আস্তে সোডিয়াম গ্রহণের হার কমিয়ে আনা হলে তার সঙ্গে শরীরও সমন্বয় করে নেবে ফলে স্বাদের তারতম্য হবে নাএফডিএ যেসব পরামর্শ দিয়েছে১ খাবারের লেবেলে থাকা পুষ্টিমান পড়াপ্যাকেটজাত খাবার বা প্রক্রিয়াজাত খাবারের লেবেলে উপাদানের যে বর্ণনা থাকে সেখান থেকে দিনে কতটুকু সোডিয়াম শরীরে প্রবেশ করছে তা যাচাই করা যেতে পারে২ নিজের খাবার নিজে তৈরি করাইনস্ট্যান্ট নুডলস তৈরি পাস্তা নানা ধরনের সসের ব্যবহার কমিয়ে এনে নিজের খাবার তৈরি করা যেতে পারে৩ সোডিয়ামমুক্ত ফ্লেভার যোগ করারান্না করার সময় বা খাওয়ার সময় লবণ ব্যবহার করা যতটা সম্ভব কমিয়ে দিতে হবে বিশেষ করে খাবার টেবিলে কাঁচা লবণ খাওয়া পরিহার করতে হবে লবণের বদলে নানা ধরনের ভেষজ ব্যবহার করে স্বাদের পরিবর্তন আনা যেতে পারে৪ তাজা খাদ্যদ্রব্যপ্যাকেটজাত বা প্রক্রিয়াজাত খাবার না কিনে তাজা খাবার খাওয়ার প্রবণতা বাড়াতে হবে তবে সেক্ষেত্রেও প্যাকেটে দেখে নেয়া ভালো যে কোন লবণ পানি ব্যবহার করা হয়েছে কিনা৫ সস বা সিজনিং পরিহারশাকসবজি বা সালাদ খাওয়ার সময় লবণ সস ইত্যাদি ব্যবহার না করলে সোডিয়ামের মাত্রাও কমে আসবে৬ লবণাক্ত খাবার ধুয়ে খাওয়াকৌটার বা প্রক্রিয়াজাত খাবার (যেমন সিমের বিচি টুনা সবজি) খাওয়ার পূর্বে ধুয়ে নেয়া যেতে পারে তাহলে এসব খাবার থেকে সোডিয়ামের মাত্রা অনেক কমে আসবে৭ হালকা খাবারে লবণ পরিহারসকাল বা বিকালের হালকা খাবারে লবণ বা সস জাতীয় পণ্য এড়িয়ে চলা ভালো তার বদলে ফল বা গাজরের মতো খাদ্য খাওয়া যেতে পারে যাতে সোডিয়াম থাকে না৮ বিকল্প ব্যবহার করুনঅনেক সময় সালাদের মতো পণ্যে সস বা ড্রেসিং ব্যবহার করার মাধ্যমে আসলে সোডিয়াম বা লবণ যোগ করা হয় এফডিএ পরামর্শ দিচ্ছে সস বা বোতলের ড্রেসিং ব্যবহার না করে ভিনেগার তেল সালাদে ব্যবহার করা যেতে পারে৯ খাবারের প্লেট হালকা করুনকম খাবার মানেই কম সোডিয়াম তাই ঘরে বা বাইরে খাওয়ার সময় ছোট টুকরো নেয়া অল্প খাওয়ার অভ্যাস তৈরি করা ভালো১০ জিজ্ঞেস করুন কম লবণের খাবার দিতে পারবে কিনারেস্তোরাঁ বা বাইরে কোথাও খাবার সময় জিজ্ঞেস করা যেতে পারে যে তারা কম লবণের খাবার তৈরি করতে পারবে কিনা এছাড়া সস বা সালাদের ড্রেসিং টেবিলে দেয়ার জন্য বলতে পারেন তাহলে আপনি সেটা কম মাত্রায় ব্যবহার করতে পারবেন চিনি শর্করা বা সুগার যে নামেই ডাকা হোক না কেন গত কয়েক দশক ধরে এটি বিজ্ঞানী ও চিকিৎসকদের মাথাব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছেতারা বলছেন এটি জনস্বাস্থ্যের অন্যতম প্রধান শত্রুতে পরিণত হয়েছে বিভিন্ন দেশের সরকার এর ওপর বাড়তি কর বসাচ্ছে স্কুল আর হাসপাতালগুলো খাদ্যতালিকা থেকে একে বাদ দিয়ে দিচ্ছে বিশেষজ্ঞরা বলছেন আমাদের খাবার থেকে চিনি সম্পূর্ণ বাদ দিয়ে দিতেবিজ্ঞানীরা বলছেন উচ্চমাত্রার ফ্রুকটোজসমৃদ্ধ কর্ন সিরাপ বা বাড়তি চিনিওয়ালা পানীয় জুস ড্রিংক মধু বা সাদা চিনি এগুলো হৃদযন্ত্রের সমস্যা তৈরি করতে পারে কারণ তা ধমনির ভেতর ট্রাইগ্লিসারাইড জাতীয় চর্বি জমাতে ভূমিকা রাখেবিভিন্ন জরিপে এই বাড়তি যোগ করা চিনি সমৃদ্ধ খাবার বা পানীয়ের সাথে হৃদরোগ ও ডায়াবেটিসে আক্রান্ত হবার সম্পর্ক দেখা গেছে এটি ক্যান্সারের ঝুঁকিও অনেকাংশে বাড়িয়ে দেয়চিনি বা অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার স্থূলতা বৃদ্ধিতেও ভূমিকা রাখে যেসব খাবার যেমন বিভিন্ন ফলের রস বা মিশ্রণ এবং সিরাপ খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক হওয়ার পরামর্শ দিচ্ছেন চিকিৎসকরাকিছু গবেষণায় বলা হয় চিনি বা মিষ্টি খাওয়ার আকর্ষণ কোকেনের আকর্ষণের মতোই যাকে বলা চলে একটা নেশাএকাধিক গবেষণার ফল পর্যালোচনা করে দেখা গেছে কোন এক দিনের খাবারে যদি ১৫০ গ্রামের বেশি ফ্রুকটোজ থাকে তাহলে তা উচ্চ রক্তচাপ বা কোলেস্টেরলের মতো সমস্যার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয়অনেক খাবারের মধ্যে চিনি যুক্ত থাকে যাকে বলা হয় মুক্ত চিনি যেমন মধু সিরাপ ফলের জুস ইত্যাদি পেস্ট্রি কেক বিস্কুট কোমল পানীয়ের মধ্যে যে চিনি যুক্ত থাকে সেটিও এর অন্তর্ভুক্ত এতে কেউ সরাসরি চিনি বা মিষ্টি না খেলেও এসব খাবার থেকে শরীরের চিনি প্রবেশ করেআবার চা বা কফি শরবতের সঙ্গে সরাসরি চিনি মিশিয়েও খাওয়া হয় একে বলা হয় বাড়তি চিনি উভয় ক্ষেত্রে শরীরের সরাসরি চিনি প্রবেশ করেযুক্তরাষ্ট্রের খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন বলছে একজন ব্যক্তি প্রতিদিন যে পরিমাণ খাবার গ্রহণ করে তার ১০ শতাংশের কম অতিরিক্ত চিনি বা বাড়তি চিনি খাওয়া উচিতচকলেটের বাইরে চা এবং কফি এজন্য অনেকাংশে দায়ীবিশ্বের অনেক দেশ চিনির ওপর বাড়তি কর বসিয়ে মিষ্টি খাওয়া কমানোর চেষ্টা করছেপুষ্টিবিদ ফারজানা আহমেদ বলছেন সরাসরি কেউ চিনি না খেলেও তার শরীরের কোন সমস্যা হবে না কারণ নানা খাবার থেকে শরীর চিনি বা গ্লুকোজ পেয়ে থাকে তাই তার সরাসরি চিনি না খেলেও চলে তাই আমরা সবাইকে পরামর্শ দেই চিনি না খেয়ে পারলে ভালো তারপরেও খেতে ইচ্ছা করলে এক চামচের বেশি নয় আর শিশুর জন্মের দুই বছর চিনি ও লবণ দুইটাই মানা করিঅনেকের চিনি বা মিষ্টিজাতীয় খাবারের প্রতি আসক্তি থাকে বেশি সময় মিষ্টিজাতীয় খাবার না খেলে তাদের অস্থির লাগতে থাকে''এটা কাটাতে সচেতনভাবে আস্তে আস্তে চিনি বা মিষ্টি জাতীয় খাবার খাওয়া কমিয়ে আনতে হবে আর আমরা টক দই খেতেও পরামর্শ দেই কারণ টক দই খেলে মিষ্টির প্রতি জিহ্বায় একপ্রকার স্পর্শকাতরতা তৈরি হয় তখন মিষ্টি খাওয়ার আগ্রহ কমে যায়'' বলছেন পুষ্টিবিদ ফারজানা আহমেদ হলিউডের 'ব্ল্যাক প্যান্থার' সিনেমায় প্রধান ভূমিকায় অভিনয় করা চ্যাডউইক বোসম্যান ৪৩ বছর বয়সে কোলন বা মলাশয়ের ক্যান্সারে মারা যাওয়ার পর এই বিশেষ ধরণের ক্যান্সার সম্পর্কে সোশ্যাল মিডিয়ায় আলোচনা করতে দেখা গেছে ব্যবহারকারীদেরতুলনামূলক কম বয়সে মানুষের মধ্যে কোলন ক্যান্সারের হার কেন বাড়ছে ঠিক কী কী কারণে কোলন বা কোলোরেকটাল ক্যান্সার হয়ে থাকে এই ধরণের বিষয়গুলো নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় খোঁজখবর নিচ্ছেন এবং আলোচনা করছেন অনেকেআমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির ২০১৭ সালের এক গবেষণায় দেখা যায় যে যুক্তরাষ্ট্রে প্রাপ্তবয়স্ক তরুণদের মধ্যে কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার গড় বয়স কমছেআমেরিকান ক্যান্সার সোসাইটির তত্বাবধান বিভাগের প্রধান এবং গবেষণা নিবন্ধটির একজন লেখক রেবেকা সিগেল সিএনএন'কে দেয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেন বিজ্ঞানীরা জানতেন যে তরুণদের মধ্যে কোলোরেকটাল ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার হার বাড়ছে কিন্তু এত দ্রুতগতিতে এটি হচ্ছে সেটা জানতে পেরে আমরা বিস্মিত হয়েছিমিজ সিগেল বলেন এই রিপোর্টটি গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি যে শুধু বর্তমানের ক্যান্সার পরিস্থিতির চিত্র তুলে ধরে তাই নয় ভবিষ্যৎ সম্পর্কেও আমাদের ধারণা দেয়তিনি মন্তব্য করেন প্রাপ্তবয়স্ক তরুণদের মধ্যে কোলন ক্যান্সার শনাক্ত হওয়ার হার বাড়তে থাকলে তাদের সন্তান জন্মদানের ক্ষমতা ও যৌন ক্ষমতা অক্ষুণ্ণ রাখা নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে ডাক্তাররা নতুন ধরণের চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বেনপাশাপাশি তরুণরা আক্রান্ত হলে দীর্ঘ মেয়াদে তাদের চিকিৎসা চালিয়ে যেতে হয় যেই ক্ষেত্রে দীর্ঘসময় ধরে চিকিৎসার পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলোর বিষয়েও নতুন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হবে চিকিৎসকদের যুক্তরাজ্যের স্বাস্থ্য সেবা ব্যবস্থা এনএইচএস'এর তথ্য অনুযায়ী কোলন ক্যান্সারের নির্দিষ্ট কোন কারণ জানা যায় না তবে কিছু কিছু বিষয় এই ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে সেগুলো হলবয়স কোলন ক্যান্সারে ভুগতে থাকা প্রতি ১০ জনের ৯ জনের বয়সই ৬০ বা তার চেয়ে বেশিখাদ্যাভ্যাস অতিরিক্ত মাংস খাওয়া এবং খাদ্য তালিকায় ফাইবার সমৃদ্ধ খাবারের স্বল্পতা থাকলে ঝুঁকি বাড়েওজন অতিরিক্ত ওজন যাদের রয়েছে তাদের মধ্যে এই ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা বেশি থাকেব্যায়াম যথেষ্ট শারীরিক পরিশ্রম না করা হলে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়মদ্যপান ও ধূমপান মদ্যপান ও ধূমপান কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারেপারিবারিক ইতিহাস পরিবারের কোনো সদস্যের (বাবা মা বা ভাই বোন) যদি ৫০ এর কম বয়সে কোলন ক্যান্সার হয় তাহলে ঐ ব্যক্তিরও ক্যান্সারের সম্ভাবনা বাড়েএছাড়া মলত্যাগের জন্য হাই কমোড ব্যবহার করা কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়াতে পারে বলে উঠে আসে ২০১২ সালে যুক্তরাষ্ট্রের জাতীয় স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউটের জার্নালে প্রকাশিত হওয়া এক গবেষণায় গবেষণাটি ২০০৭ থেকে ২০০৯ পর্যন্ত তেহরানের ১০০ জন কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত রোগীর তথ্য নিয়ে তৈরি করা হয়েছিল এনএইচএস'এর ওয়েবসাইটের তথ্য অনুযায়ী কোলন ক্যান্সারের প্রধান উপসর্গ তিনটি সেগুলো হলমলের সাথে নিয়মিত রক্ত নির্গত হওয়া মলের সাথে রক্ত নির্গত হয় সাধারণত পাকস্থলীর কার্যক্রমে পরিবর্তন হলেপাকস্থলীর কার্যক্রমে দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তন এরকম সময়ে রোগী সাধারণ সময়ের চেয়ে বেশি মলত্যাগ করে এবং মল অপেক্ষাকৃত তরল হয়ে থাকেতলপেটে ক্রমাগত ব্যাথা পেট ফোলা বা অস্বস্তি বোধ করা এই উপসর্গের সাথে সাধারণত খাদ্যাভ্যাসে পরিবর্তন খাওয়ার রুচি হারানো বা ওজন হারানোর সংশ্লিষ্টতা থাকেএছাড়া ডায়রিয়া বা কোষ্ঠকাঠিন্য মলত্যাগ করার পরও বারবার মলত্যাগের ইচ্ছা হওয়া বা রক্তে আয়রনের স্বল্পতার মত উপসর্গও দেখা যায় কোলন ক্যান্সারে বাংলাদেশে কী পরিমাণ মানুষের মধ্যে কোলন ক্যান্সার শনাক্ত হয়েছে সেসম্পর্কে নির্দিষ্ট কোনো পরিসংখ্যান না থাকলেও বাংলাদেশের জাতীয় ক্যান্সার রিসার্চ ইনস্টিটিউটের ২০১৪ সালের রিপোর্ট অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট ক্যান্সার আক্রান্ত রোগীদের মধ্যে ১৯২ ভাগ পরিপাকতন্ত্রের ক্যান্সারে আক্রান্ত হয়ে থাকেজাতীয় ক্যান্সার গবেষণা ইনস্টিটিউটের এপিডেমিওলজি বিভাগের প্রধান হাবিবুল্লাহ তালুকদার বলেন বাংলাদেশে ক্যান্সার পরিস্থিতির বিস্তারিত বিশ্লেষণ বা কোন ধরণের ক্যান্সারে মানুষ বেশি ভুগে এই বিষয়ে সাম্প্রতিক তথ্য না থাকলেও কমবয়সীদের মধ্যে আজকাল কোলন ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার হার কিছুটা বেশি বলে লক্ষ্য করা যাচ্ছে বলে আমরা ধারণা করছিআর মলত্যাগে হাই কমোডের ব্যবহার কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ায় কিনা এই প্রশ্নের উত্তরে মি তালুকদার বলেন এই বিষয়ে এখনো সেভাবে কোনো গবেষণা না থাকলেও মলত্যাগের পদ্ধতির সাথে কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ার সম্পর্ক থাকার সম্ভাবনা রয়েছেমি তালুকদার বলেন আমাদের ধারণা হাই কমোডে বসে মলত্যাগ করলে মলাশয় পুরোপুরি পরিষ্কার হয় না প্রয়োজনীয় চাপ না পড়ায় মলদ্বারে কিছুটা মল থেকে যায় আর মলে অসংখ্য জীবাণু থাকে আর সেই জীবাণু সেখানে থেকে যাওয়ায় কোলন ক্যান্সারের ঝুঁকি বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হতে পারে হেপাটাইটিস যকৃতের প্রদাহজনক অবস্থাকে বোঝায় এটি সাধারণত একটি ভাইরাল সংক্রমণের কারণে ঘটে থাকে তবে হেপাটাইটিসের অন্যান্য সম্ভাব্য কারণও রয়েছে এর মধ্যে রয়েছে অটোইমিউন হেপাটাইটিস এবং হেপাটাইটিস যা ওষুধ ড্রাগ টক্সিন এবং অ্যালকোহলের গৌণ ফলাফল হিসাবে ঘটে অটোইমিউন হেপাটাইটিস এমন একটি রোগ যা আপনার শরীর যখন আপনার লিভারের টিস্যুর বিরুদ্ধে অ্যান্টিবডি তৈরি করে তখন ঘটেহেপাটাইটিস হিসাবে শ্রেণিবদ্ধ লিভারের ভাইরাল সংক্রমণের মধ্যে হেপাটাইটিস এ বি সি ডি এবং ই অন্তর্ভুক্ত রয়েছে প্রতিটি ধরণের ভাইরাল সংক্রমণে হেপাটাইটিসের জন্য আলাদা ভাইরাস দায়ী এই ওয়েবসাইটটির ফোকাসের জন্য আমরা কেবলমাত্র হেপাটাইটিস অবস্থার উপর দৃষ্টি নিবদ্ধ করব যা যৌনতার মাধ্যমে সংক্রমণ হতে পারে হেপাটাইটিস বি সংক্রামক শরীরের তরল যেমন রক্ত যোনি নিঃসরণ বা বীর্যর সংস্পর্শের মাধ্যমে সংক্রামিত হয় যাতে হেপাটাইটিস বি ভাইরাস (এইচবিভি) থাকে ইনজেকশনের ওষুধের ব্যবহার সংক্রামিত অংশীদারের সাথে সেক্স করা বা সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে রেজার ভাগ করে নেওয়া আপনার হেপাটাইটিস বি হওয়ার ঝুঁকি বাড়ায় হেপাটাইটিস সি হেপাটাইটিস সি ভাইরাস (এইচসিভি) থেকে আসে হেপাটাইটিস সি সংক্রামিত শরীরের তরলগুলির সাথে সরাসরি যোগাযোগের মাধ্যমে সাধারণত ইনজেকশন ড্রাগের ব্যবহার এবং যৌন যোগাযোগের মাধ্যমে সঞ্চারিত হয় এইচসিভি হ'ল আমেরিকা যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে সাধারণ রক্তবাহিত ভাইরাল সংক্রমণের মধ্যে একটি আমাদের শরীর যখন যেকোনো ধরনের রোগজীবাণু কিংবা ভাইরাসব্যাকটেরিয়া দ্বারা আক্রান্ত হয় তখন সেগুলো থেকে শরীরকে রক্ষা করে আমাদের শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা সুতরাং যার রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা যতটা ভালো তার রোগবালাইয়ে আক্রান্ত হবার ঝুঁকি ততই কম রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতার কিছু অংশ আমরা জন্মের সময়ই অর্জন করি আর বাকিটা আমাদের জীবনযাপন পদ্ধতির ওপর নির্ভর করে তাই শরীরের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হলে নিচের নিয়মগুলো মেনে চলা খুব জরুরি এগুলো হলোধূমপান এবং যেকোনো ধরনের নেশাদ্রব্য থেকে দূরে থাকুন আপনি যদি ধূমপায়ী হোন তবে যেকোনো রোগে আপনার আক্রান্ত হবার সম্ভাবনা অধূমপায়ীদের থেকে অনেক বেশিস্বাস্থ্যকর খাবার খেতে হবে তেল চর্বি ও বেশি মশলাযুক্ত খাবারের বদলে শাকসবজি ফলমূল ও আঁশযুক্ত খাবার বেশি খেতে হবে চিনিযুক্ত খাবার কম খাওয়াই ভালো চাকফি অতিরিক্ত না খাওয়াই ভালোপ্রতিদিন শারীরিক পরিশ্রম করতে হবে নিয়মিত আধাঘণ্টা জোরে জোরে হাঁটা শরীরের জন্য খুব ভালো ব্যায়ামনিজের ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে হবেমানসিক চাপ কমাতে হবে কাজের পাশাপাশি পরিবার ও বন্ধুদেরকে সময় দেওয়া কিংবা কোনো ধরনের সখের কাজ মানসিক চাপ নিয়ন্ত্রণে সহায়করক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখা জরুরি উচ্চ রক্তচাপ শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমিয়ে ফেলে পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবে ঘুমের পরিমাণ বয়সের সাথে সাথে কম বেশি হতে পারে তবে সুস্থ থাকতে হলে প্রতিদিন কমপক্ষে ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুমানো খুব জরুরিনিজেকে পরিছন্ন রাখতে হবে বারবার সাবান পানি দিয়ে হাত ধোয়া কিংবা স্যানিটাইজার দিয়ে হাত স্যানিটাইজ করার অভ্যাস সুস্থ থাকার জন্য একটা জরুরি অভ্যাস চোখমুখে হাত দেওয়া নাক খোঁটা—এই জাতীয় অভ্যাসগুলো ছেড়ে দিতে হবে যেখানে সেখানে থুতু ফেলার মতো বাজে অভ্যাস বাদ দিতে হবেএসব নিয়ম মেনে চললে আমাদের শরীর রোগের বিরুদ্ধে আরো ভালো প্রতিরোধ তৈরি করতে পারবে আর আমরাও একটা সুস্থ জীবনযাপন করতে পারব কোনো অভ্যাস তৈরি করতে বা ছাড়তে সেটির হ্যাবিট লুপ বা অভ্যাসের চক্র গড়তে বা ভাঙতে হবে এই অভ্যাসের চক্রটি ভাঙতে হলে নিচের ধাপগুলো মেনে চলতে হবে১ রুটিনটি চিহ্নিত করুনযে অভ্যাসটি বদলাতে চান এবং তার রুটিনটি চিহ্নিত করুন ধরুন আপনি দেরিতে ঘুম ভাঙার অভ্যাস ছাড়তে চান সেটি করতে হলে দেরিতে ঘুমাতে যাওয়া কিংবা অ্যালার্ম বন্ধ করে আবার ঘুমিয়ে যাওয়ার রুটিনটি পরিবর্তন করতে হবে ২ অন্য পুরস্কার বের করুনহ্যাবিট লুপের পুরস্কার অংশটির জন্য খারাপ অভ্যাসগুলো স্থায়ী হয় খারাপ অভ্যাসটি কেন আপনি বারবার করছেন তা খুঁজে বের করুন ধরুন আপনি ফোনে আসক্তির অভ্যাসটি পরিবর্তন করতে চান এখন বিনোদন প্রিয়জনের বার্তা কিংবা সময় কাটানো–এগুলো সব শুধু সোশ্যাল মিডিয়া থেকেই পেলে ফোনে আসক্তি বাড়বেই তাই না তাই ফোনের বদলে ১০ মিনিট বই পড়ুন চা/কফি তৈরি করে সময় কাটান বিনোদনের উৎস হিসেবে ফোনের পরিবর্তে অন্য কিছু যখন হবে তখন ফোনে আসক্তি এমনিতেই কমে যাবে ৩ সংকেত চিহ্নিত করুনকোন সংকেতগুলো আপনার অভ্যাসটি শুরুর ইঙ্গিত দেয় তার উদাহরণ প্রথমেই দেওয়া হয়েছিল যেই অভ্যাসটি বদলাতে চান খেয়াল করুন আপনি কোথায় কখন কাদের উপস্থিতিতে কেমন মনের অবস্থায় বা কোন কাজের পরে সেটি করছেন কয়েকদিন ধরে চিহ্নিত করার চেষ্টা করুন আপনার জন্য প্রযোজ্য সংকেতটি কী অভ্যাস ছাড়ার গুরুত্বপূর্ণ ধাপ এটি৪ পর্যবেক্ষণগুলো প্রয়োগ করুনধরুন অ্যালার্ম বাজলে সেটি বন্ধ করে অতিরিক্ত ঘুমানোর অভ্যাস আপনার এটি করছিলেন কারণ সকালের কাজগুলো করতে আগ্রহী না আপনি কিন্তু অভ্যাসটি পর্যবেক্ষণ করে বুঝবেন যে দেরিতে উঠে হুলস্থুল করে কর্মক্ষেত্র বা শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতেও দেরি হচ্ছে পর্যবেক্ষণের সাথে সাথে আসে প্রয়োগের ব্যাপারটা যখন আপনি আপনার বাজে অভ্যাসের কারণ এবং এর ফলে ক্ষতি সম্পর্কে জানেন তখন আপনার জন্য কী করে সেই অভ্যাসটি বদলানো যায় সেটি বের করা এবং সেটি প্রয়োগ করা সোজা যেমন দেরিতে ঘুম থেকে ওঠার অভ্যাসটি বদলাতে রাতে নাস্তা তৈরি পোশাক নির্বাচন প্রয়োজনীয় জিনিস গুছিয়ে রাখা তারাতারি ঘুমাতে যাওয়া–এই জাতীয় কাজগুলো করতে হবে এর ফলাফল স্বরূপ আপনি সকাল সকাল ঘুম থেকে উঠতে পারবেন এবং সকালের কাজগুলো ভালোমতো করতে পারবেনমনে রাখবেন একই পন্থা সবার প্রযোজ্য নাও হতে পারে এবং যেকোনো অভ্যাস স্থায়ী হতে এক মাসেরও বেশি সময় প্রয়োজন হয় তাই ধৈর্যশীল হতে হবে এবং নতুন রুটিনটি আপনার জন্য ঠিক কি না তা আপনাকেই বিচার করতে হবে খাদ্যতালিকায় কম কার্বোহাইড্রেট বা শর্করা রাখাটা ওজন কমানোর জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ গবেষণা ঠিক এমনটাই বলে লোকার্ব ফুড বা কম শর্করা জাতীয় খাবার আমাদের ক্ষুধাকে উপশম করে এবং খাওয়ার সময় খাবার গ্রহণের পরিমাণ না কমিয়ে কেবলমাত্র লোকার্ব ফুড গ্রহণ করেও ওজন কমানো যায় দ্য ডায়েটারি গাইডলাইন অব আমেরিকাএর মতে আমাদের দৈনিক গ্রহণ করা মোট ক্যালোরির প্রায় ৪৫৬৫ আসে কার্বোহাইড্রেট থেকে তাই খাদ্যতালিকায় কার্বোহাইড্রেটের পরিমাণ কমানো মানেই গৃহীত ক্যালোরির পরিমাণ কমানো লো ফ্যাট বা কম চর্বিযুক্ত ডায়েটের তুলনায় লো কার্বোহাইড্রেট ডায়েট ওজন কমাতে অধিক কার্যকরী এজন্য হাই কার্ব ফুড যেমন সাদা চিনি সাদা ময়দা চাল সাদা পাউরুটি ইত্যাদির পরিবর্তে বিভিন্ন শাকসবজি ফলমূল ও আমিষ জাতীয় খাবার খাদ্যতালিকায় যুক্ত করতে হবে দিনে কতটুকু শর্করা খাবেন তা নির্ভর করে আপনার বয়স ওজন লিঙ্গ কাজের পরিমাণ ইত্যাদির ওপর তবে স্বাভাবিক মাত্রা ধরা হয় দিনে ৩০০ গ্রাম তবে ওজন কমানোর লক্ষ্যে আপনি সেটা কমিয়ে ৫০ ১৫০ গ্রাম পর্যন্ত আনতে পারেন যাদের শরীর স্লিম যারা কর্মচঞ্চল এবং কেবলমাত্র ফিট থাকতে চান তারা প্রতিদিন ১০০১৫০ গ্রাম কার্বোহাড্রেট গ্রহণ করেও ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখতে পারেন তবে খেয়াল করে প্রতিদিন ঠিকমতো সকল প্রকার সবজি ফলমূল এবং স্বাস্থ্যকর কার্বস যেমন মিষ্টি আলু গোটা শস্যদানা এবং ওটস গ্রহণ করতে হবেযাদের ওজন একটু বেশি তারা ৫০১০০ গ্রাম কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ করে ওজন কমিয়ে আনতে পারেন সেক্ষেত্রে তাদেরকেও কার্ব জাতীয় খাবারের পরিবর্তে শাকসবজি ফলমূল শস্যদানা গ্রহণ করতে হবেযাদের ওজন একদম বেশি দ্রুত ওজন কমাতে চান এবং শরীরে মেটাবলিক সমস্যা আছে তারা দৈনিক ২০৫০ গ্রাম কার্ব বা শর্করা গ্রহণ করতে পারেন পাশাপাশি শাকসবজি বেরি জাতীয় ফল যেমন জাম ক্রিম বাদাম এবং শিমের বিচি জাতীয় খাবার গ্রহণ করতে পারেনলোকার্ব ফুড ডায়েট কেবলমাত্র ওজনই কমায় না এটি আমাদের সার্বিক স্বাস্থ্যের জন্যও উপকারী সঠিক শারীরিক গঠনে কার্বোহাড্রেটেরও প্রয়োজনীয়তা আছে হাই কার্ব ফুড বা উচ্চ শর্করা জাতীয় খাবার এড়িয়ে গিয়ে তাই অল্প শর্করাযুক্ত খাবার বেছে নেওয়াটাই বুদ্ধিমানের কাজযা এড়িয়ে যাবেন সাদা চিনিসাদা আটাময়দাপ্রসেসড বা প্যাকেটজাত খাবারনুডুলস পাস্তাযা গ্রহণ করবেন কম ফ্যাটযুক্ত মাছমাংসডিমশাকসবজি বাদাম ফলমূলফাইবার বা আঁশযুক্ত খাবারগোটা শস্যদানা স্বাস্থ্যকর ফ্যাটসসঠিক খাবার বাছাই করার মাধ্যমে ওজন সহজেই কমিয়ে আনা সম্ভব লো কার্ব ডায়েট শুরু করার আগে ভালো করে যাচাই করে নিতে হবে যা খাচ্ছেন সেটা কতটুকু স্বাস্থ্যকর এবং আপনার দৈনিক কতটুকু দরকার আর আপনি কতটুক খাচ্ছেন অনেকেই তাদের মুখ এবং তার চারপাশের গাল গলা ও ঘাড়ের অংশের জমানো চর্বি কমিয়ে আনতে চান নিজের মুখশ্রী আরেকটু আকর্ষণীয় করে তোলার জন্যবাজারে এমন অনেক ডিজিটাল ডিভাইস এবং স্ট্র্যাপ পাওয়া যায় যেগুলোর নির্মাতার প্রতিষ্ঠান দাবি করে যে সেগুলো মুখমণ্ডলের আশেপাশে জমা অতিরিক্ত চর্বি কমাতে সক্ষম কিন্তু বাস্তবতা হলো শরীরের যেকোনো অংশের জমা চর্বি কমানোর জন্য দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা করে খাদ্যাভাস এবং লাইফস্টাইলের বা জীবনযাত্রায় পরিবর্তন প্রয়োজনতবে আশার বিষয় হলো মুখমণ্ডলের জমা চর্বি কমানোর বেশ কিছু কার্যকরী কৌশল রয়েছে এমন ৮টি কৌশল সম্পর্কে চলুন জেনে আসি১ ফেসিয়াল এক্সারসাইজ বা মুখমণ্ডলের ব্যায়ামমুখের ব্যায়াম মুখে অবস্থিত মাসলসমূহকে দৃঢ় করে এবং ত্বকের রিংকেলস (কুঁচকে যাওয়া) দূর করতে পারেতাছাড়া কিছু গবেষণায় এটাও প্রকাশ পেয়েছে যে বিভিন্ন ফেসিয়াল এক্সারসাইজ মুখের মাসলকে টোন করতে পারে যা মুখমণ্ডলকে দেখতে আরও স্লিম করে তোলে এছাড়া এমন ব্যায়ামগুলো মুখের ত্বককে করে তোলে প্রাণবন্ত এবং তরুণের মতো উজ্বলতা এনে দিতে পারে ২ কার্ডিও বা হৃৎপিণ্ড সংশ্লিষ্ট ব্যায়ামবেশিরভাগ ক্ষেত্রে মোটা হয়ে যাওয়ার সময় শরীরের বিভিন্ন অংশের পাশাপাশি মুখেও অতিরিক্ত চর্বি জমা হয় তাই ওজন কমাতে পারলে মুখে জমা চর্বিও এমনিতেই কমে যায়কার্ডিও এক্সারসাইজ মূলত সেই সকল ব্যায়াম যা হৃৎপিণ্ডের গতি বাড়ায় এবং ওজন কমানোর জন্য খুবই কার্যকরী প্রতিদিন ২০ ৪০ মিনিটের মতো কার্ডিওই যথেষ্ট হাঁটা দৌড়ানো বাই সাইকেলিং সাঁতার ড্যান্সিং স্কেটিং সবই কার্ডিও ব্যায়াম৩ যথেষ্ট পানি পানপরিমাণমতো পানি পান করা সর্বোপরি স্বাস্থ্যের জন্য খুবই গুরুত্বপূর্ণ এমনকি শরীর ও মুখের অতিরিক্ত চর্বি কমিয়ে আনার ক্ষেত্রেপানি শরীরের মেটাবলিজম বাড়ায় এবং শরীরে ক্যালোরি গ্রহণের পরিমাণ কমায় এছাড়া পানি পানে ক্ষুধা কমে যা ওজন কমাতে সাহায্য করে৪ মদ বা নেশাদ্রব্য গ্রহণ বন্ধ করাঅতিরিক্ত মদ পান শরীর ও মুখে মেদ বা চর্বি জমার কারণ হতে পারে মদ শরীরে ডিহাইড্রেশন অর্থাৎ পানিশূন্যতা সৃষ্টি করে যা শরীরকে পানি ধারণ করে রাখতে প্রভাবিত করে যার ফলে ওজন বাড়তে পারেএছাড়া মদ আমাদের ক্ষুধার অনুভূতিতে ব্যাঘাত ঘটায় যা অধিক খাবার গ্রহণের কারণ হতে পারে ৫ রিফাইনড কার্বোহাইড্রেট গ্রহণ কমানো রিফাইনড কার্বস ( সাদা চিনি সাদা ময়দা সাদা চাউল সাদা রুটি প্রভৃতি) জাতীয় খাবার আমাদের ব্লাড সুগার বাড়িয়ে দিতে পারে আর হাই ব্লাড সুগার শরীরে অধিক চর্বি জমার অন্যতম একটি কারণ ৬ পর্যাপ্ত ঘুম প্রতিদিন পর্যাপ্ত ঘুমের অভাবে শরীরের মেটাবলিজম কমে যায় যা মুখ ও শরীরের অন্যন্য অংশে চর্বি জমার কারণ হতে পারে এছাড়া ঠিকমতো ঘুম না হলে শরীরে স্ট্রেস হরমোন কর্টিসল বেড়ে যায় যেটি কি না ওজন বাড়ানোর একটি কারণ তাই পর্যাপ্ত ঘুম শরীরের চর্বি কমাতে খুবই প্রয়োজন৭ সোডিয়াম বা লবণ গ্রহণের পরিমাণ কমিয়ে আনাখাবারে লবণের পরিমাণ কমিয়ে আনলে সেটি শরীরের ওজন কমাতে সাহায্য করে লবণ মূলত শরীরে অধিক পানি ধারণ ক্ষমতা সৃষ্টি করে যা মুখমণ্ডলেও ফোলা ফোলা ভাব সৃষ্টি করতে পারে৮ অধিক আঁশযুক্ত খাবার গ্রহণআঁশ বা ফাইবার যুক্ত খাবার আমাদের ক্ষুধা প্রশমিত করে যা ওজন কমাতে ভূমিকা রাখতে পারে বিভিন্ন প্রকার শাক সবজি ফল গোটা শষ্যদানা প্রভৃতি খাবারে প্রচুর ফাইবার রয়েছে আমাদের দৈনিক ২৫৩৮ গ্রাম আঁশযুক্ত খাবার খাওয়া প্রয়োজনতবে কেবলমাত্র মুখমণ্ডলের চারপাশে জমা চর্বি কমানোর পরিবর্তে পুরো শরীরের চর্বি কমানোর লক্ষ্যে কাজ করা উচিত কারণ সম্পূর্ণ শরীরে চর্বি কমে গেলে মুখেরও কমবেসঠিক খাদ্যাভাস কর্মচঞ্চলতা পরিমিত ঘুম ও স্ট্রেস/মানসিক চাপমুক্ত জীবন হতে পারে মুখসহ সম্পূর্ণ দেহে জমা অতিরিক্ত চর্বি থেকে মুক্তির একটি স্থায়ী সমাধান দেহের বাড়তি ওজন কমাতে দীর্ঘসময় লেগে থাকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ হাল না ছেড়ে খেয়াল করুন আপনার শরীরের দিকেকিছু শারীরিক লক্ষণ আছে যার মাধ্যমে আপনি বুঝবেন যে ওজন কমানোর পথে আপনি সঠিকভাবেই এগিয়ে যাচ্ছেন– ১ মানসিক সুস্থতা বৃদ্ধিওজন কমলে মানসিক সুস্থতার উন্নতি ঘটে ২০১৩ সালের এক সমীক্ষায় দেখা গেছে যেসব ব্যক্তি ১ বছর ধরে ওজন কমানোর চেষ্টা করছেনওজন কমার পর তাদের ডিপ্রেশন উদ্বিগ্নতা কমে যায় অপরদিকে প্রাণশক্তি আত্মসংযম বেড়ে যায় তবে ট্রমা (মানসিক আঘাত) অসুস্থতা কিংবা ডিভোর্সচাকরি চলে যাওয়ার মতো পরিস্থিতির কারণে ওজন কমে গেলে সেক্ষেত্রে এই মানসিক ব্যাপারগুলো কাজ নাও করতে পারে ২ আঁটোসাঁটো পোশাক গায়ে লাগাযেই কামিজ বা জিন্স গায়ে জড়াতে একপ্রকার যুদ্ধ করা লাগত তা এখন সহজেই পরতে পারছেন যার অর্থ ওজন একটু হলেও কমেছেওজন কমানোর যাত্রায় এই বিষয়টি বেশ মানসিক প্রশান্তি দেয় ২০১৭ সালে করা এক সমীক্ষায় দেখা গেছে ৭৭ নারী ও ৩৬ পুরুষ দাবি করেছেনযে পোশাক গায়ে ফিট হওয়া তাদেরকে ওজন কমানোর ক্ষেত্রে অনুপ্রেরণা দিয়েছে৩ শরীরের মাপে পরিবর্তনশরীরের বিভিন্ন অংশের বিশেষত কোমরের মাপ কমার অর্থ আপনার ওজন কমেছে এটি সুস্বাস্থ্যেরও একটি পরিমাপ গবেষকরা ৪৩০ জন ব্যক্তির ২ বছরের ওজনের পরিবর্তন লক্ষ করে দেখেছেন কোমরের মাপ কমার সঙ্গে সঙ্গে ব্লাড প্রেশার ব্লাড সুগার কোলেস্টেরলের মাত্রাও কমে আসে৪ শরীরের দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা কমাওজন কমলে দেহের যে অংশগুলো বেশি ভার বহন করে (বিশেষত পায়ের নিম্নাংশ মেরুদণ্ডের শেষ অংশ) সেগুলোর ব্যথা কমে২০১৭ সালের এক গবেষণা অনুযায়ী যেসব ব্যক্তিরা অন্তত ১০ ওজন কমিয়েছে তাদের দেহের ভার বহনকারী অংশের দীর্ঘস্থায়ী শারীরিক ব্যথা কমেছেআরেক গবেষণা বলছে ২০ ওজন কমালে আর্থ্রাইটিস ও হাঁটুর ব্যথায় ভোগা ব্যক্তিদের ব্যথা কমে৫ রক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে থাকারক্তচাপ নিয়ন্ত্রণে রাখার একটি ভালো উপায় হলো স্বাস্থ্যকর ডায়েটে ওজন কমানো আগের চেয়ে আপনার রক্তচাপ যদি কমে আসে তবে তা ওজন কমার ক্ষেত্রে ভালো ইঙ্গিত দিচ্ছে৬ কম নাক ডাকাবেশি ওজনের সঙ্গে নাক ডাকার সম্পর্ক রয়েছে আপনার যদি এই সমস্যা থেকে থাকে এবং আগের চেয়ে বর্তমানে তার মাত্রা কমে তাহলে ধরে নিতে পারেন ওজন কমেছেওজন কমানোর স্বল্পমেয়াদি কোনো পরিকল্পনা না করে দীর্ঘমেয়াদি ও স্বাস্থ্যকর পরিকল্পনা করুন এতে ওজন কমার পাশাপাশি আপনি সুস্বাস্থ্যের অধিকারী হতে পারবেন এই গরমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে ডায়রিয়াসহ অন্যান্য পানিবাহিত নানান মারাত্মক রোগ তাই এগুলো প্রতিরোধ করতে সঠিক নিয়মে পানি বিশুদ্ধ করে খাওয়াটা জরুরিপানি বিশুদ্ধিকরণের কিছু পদ্ধতি যা আপনি ব্যবহার করতে পারেন১ পানি ফুটানোফুটানো হলো পানি বিশুদ্ধিকরণের সবচেয়ে নিরাপদ উপায় এই পদ্ধতিতে একটি পাত্রে পরিষ্কার পানিকে ১০০ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্রায় ফুটাতে হবে এবং ফুটন্ত অবস্থায় ২৩ মিনিট রেখে দিতে হবে ফুটানো হয়ে গেলে পানি ঠান্ডা করে পরিষ্কার পাত্রে ঢেকে রেখে দিতে হবেযারা বেশি উঁচু জায়গায় থাকেন তাদের উচিত নিচু জায়গায় বসবাসকারীদের চাইতে বেশি সময় ধরে পানি ফোটানো কারণ উচ্চতায় কম তাপমাত্রাতেই পানি ফুটতে আরম্ভ করে২ ফিল্টার বা ছাকনছাকন প্রক্রিয়া পানি বিশুদ্ধিকরণের একটা কার্যকরী উপায় এবং যথাযথ উপকরণ ব্যবহার করতে পারলে পানিকে সব ধরনের দূষিত পদার্থ থেকেই মুক্ত করা যায় রাসায়নিক এবং ভৌতিক উভয় প্রক্রিয়াতেই পানি ফিল্টার করা যায় ফিল্টার করলে পানির সকল খনিজ লবণ দূরীভূত হয় না তাই এটি পানি বিশুদ্ধিকরণের অন্যান্যপদ্ধতির চাইতে বেশি স্বাস্থ্যকর ছাকন প্রক্রিয়ায় খরচও কম এবং এছাড়া এটি করার সময় পানির অপচয়ও হয় না তেমন বাজারে বিভিন্ন আকৃতির এবং ধরনের ফিল্টার কিনতে পাওয়া যায়৩ ডিস্টিলেশন বা পাতনএই পদ্ধতিতে তাপ প্রয়োগ করে পানিকে বাষ্পে পরিণত করা হয় এবং বাষ্প হিসাবেই বিশুদ্ধ পানি সংগৃহীত হয় পরে ঠান্ডা করলে পানি পাওয়া যায়তবে এটি খুব ধীর প্রক্রিয়া এবং ব্যয়বহুল যে সমস্ত ক্ষেত্রে একেবারে অপরিশোধিত পানি ছাড়া আর কোনো উৎস থাকে না তাদের জন্য এই পদ্ধতি উপযোগীপাতনের জন্য আলাদা যন্ত্রপাতি পাওয়া যায় ঘরে করতে চাইলে একটা বড়ো পাত্রে পানি দিয়ে তার ভিতরে ছোটো একটা পাত্র দিতে হবে এবং ঢাকনিটাউলটো করে বড়ো পাত্রটায় বসিয়ে দিতে হবে বাষ্পীভূত পানি ঢাকনিতে লেগে তরল হয়ে ছোটো পাত্রে জমা হবে৪ ক্লোরিনেশনক্লোরিন একটি শক্তিশালী রাসায়নিক পদার্থ এবং দীর্ঘদিন ধরেই ঘরের পানি বিশুদ্ধ করতে এটি ব্যবহার হয়ে আসছে ক্লোরিন দিয়ে সহজেই জীবাণু পরজীবীএবং অন্যান্য অণুজীবকে মারা যায় ক্লোরিন ট্যাবলেট বা তরল ক্লোরিন দিয়ে পানি বিশুদ্ধ করা যায় এটি সস্তা এবং কার্যকর তবে এক্ষেত্রে কিছুটা সতর্ক থাকাজরুরি যাদের থাইরয়েডের সমস্যা আছে তাদেরকে ক্লোরিন ব্যবহারের ব্যাপারে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত ক্লোরিন ট্যাবলেট ব্যবহার করলে সেটিউষ্ণ পানিতে দিতে হয় কারণ ক্লোরিন ট্যাবলেট পানিতে দ্রবীভূত হয় ২১ ডিগ্রি সেলসিয়াসেপানি বিশুদ্ধ করে পান করতে পারলেই আমরা আমাদের দৈনন্দিন জীবনের অনেকগুলো রোগের হাত থেকে নিস্তার পেতে পারব তাই নিজের সুবিধামতোযেকোনো একটি পদ্ধতিতে পানি বিশুদ্ধ করে নিয়ে পান করাটা জরুরি আপনি যদি ওজন কমাতে দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে থাকেন এবং খুব কঠোরভাবে লোকার্ব ডায়েট অনুসরণ করতে থাকেন তবুও দেখা যাবে কয়েক মাস পরআর আগের নিয়মে আপনার ওজন কমছে না এর কারণ আমাদের ওজন কখনও সমানুপাতিকহারে কমে না বেশিরভাগ ক্ষেত্রে লোকার্ব ডায়েট অনুসরণকরার পর প্রথম ৪৬ সপ্তাহ ওজন খুব দ্রুত কমতে থাকে কিন্তু তারপরই ওজন কমার হার কমতে থাকে প্রায় ৬ সপ্তাহ পরে ওজন কমা প্রায় স্থির হয়ে যায়এর অন্যতম কারণ হতে পারে–১এডাপ্টেশন বা অভিযোজনদীর্ঘকাল কম শর্করাযুক্ত খাবার খাওয়ার ফলে আমাদের শরীর এতে অভ্যস্ত হয়ে যায় তখন অল্প শর্করা খেলেও ওজন আর আগের মতো কমে না বরং একটি স্থিতাবস্থা লক্ষ করা যায়২হতাশ হয়ে অসচেতনভাবে খাওয়াদেহের স্বাভাবিক প্রক্রিয়ায়ই ওজন কমার হার স্থির হয়ে যায় কিন্তু অনেকে সেটা না জানার কারণে হতাশ হয়ে যায় এবং ডায়েট চার্ট অনুসরণ করার আগ্রহ হারিয়ে ফেলেতাছাড়া ওজন না কমার দুশ্চিন্তাও ওজন বাড়াতে ভূমিকা রাখে৩চর্বি কমছে কিন্তু পেশি বাড়ছেঅনেক সময় শরীরচর্চার কারণে আমাদের শরীরে চর্বি ক্ষয় হয় ঠিকই কিন্তু ওজন কমে না কারণ চর্বি যেমন কমে তেমনি মাংসপেশি তৈরি হতে থাকেমাংসপেশি রক্তে চিনির মাত্রা নিয়ন্ত্রণের পাশাপাশি আমাদের চলনশক্তি জোগায় তাই মাংসপেশি তৈরি হয়ে ওজন না কমলে ভয় পাবার কিছু নেইতাই হতাশ না হয়ে ওজন কমানো ধরে রাখতে চাইলে নিম্নোক্ত কাজগুলো করা যেতে পারে–১উপভোগ্য ব্যায়াম নির্বাচন করাওজন কমাতে আমরা যেসব কঠিন একঘেয়ে বিরক্তিকর ব্যায়ামগুলো নির্বাচন করি তার জন্য মোটিভেশন ধরে রাখা অনেক সময়ই প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়েতাই এমন কোনো শরীরচর্চা নির্বাচন করা যেতে পারে যেটা ওজন কমানোর চেয়ে আনন্দলাভের জন্যই বেশি করতে ইচ্ছে হয় যেমন বাচ্চাদের সাথে মাঠেদৌঁড়ঝাপ বা খেলাধুলা করা মোটরচালিত বাইক ব্যবহার না করে সাইকেল চালানোর অভ্যাস করা যেতে পারে গোসলের সময় পানিতে সাঁতার কেটে গোসলকরা হতে পারে ওজন কমানোর একটি উপভোগ্য ব্যায়াম ২ স্বাস্থ্যকর খাবার খাওয়াওজন কমানো মানে খাওয়াদাওয়া ছেড়ে দেওয়া না প্রক্রিয়াজাত খাবার যথাসম্ভব পরিহার করতে হবে তবে আঁশ জাতীয় খাবার যেমন ফলমূল শাকসবজিইত্যাদি পুষ্টিকর খাবার খাওয়া বরং ওজন কমাতে সহায়তা করে৩পর্যাপ্ত ঘুমকম ঘুম শরীরের জন্য ক্ষতিকর এটি ওজন বাড়িয়ে দেয় তাই ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই স্বাস্থ্যকর ঘুমের অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে৪মোটা দানার শস্য খাওয়াখুব সহজেই খাবার টেবিলে কিছু পরিবর্তন এনে ওজন কমানো যায় যেমন সাদা চালের পরিবর্তে লাল চাল খাওয়া রুটি বানানোর সময় মনে করে লাল আটা দিয়ে রুটি বানানো ইত্যাদিওজন কমানো কোনো স্বল্পমেয়াদি কার্যক্রম না রাতারাতি পরিবর্তন আসবে না কিন্তু কিছু দীর্ঘমেয়াদি স্বাস্থ্যকর অভ্যাস গড়ে তুলতে পারলে নিশ্চিতভাবেইওজন কমিয়ে স্বাভাবিক জীবনযাপন করা সম্ভব বৈশাখ মাস চলছে ইতোমধ্যেই প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে কদিন পর হয়তো তাপমাত্রা বাড়বে আরও বেশি তাই সুস্থ থাকতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া আবশ্যক স্বাস্থ্যকর ও হালকা খাবার গ্রহণ করুনগরমে সুস্থ থাকতে চাইলে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন খাদ্যতালিকায় যোগ করুন হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার একেবারে অনেক খাবার না খেয়েকিছু সময় পরপর অল্প করে খাওয়ার অভ্যাস করুন ভারী খাবারে বেশি পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট থাকে যা দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়এসবের পরিবর্তে খেতে পারেন সতেজ ফল ও সবজি যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পানি কমলা তরমুজ টমেটো ইত্যাদি এক্ষেত্রে বেশ উপকারীচোখের সুরক্ষা বজায় রাখুনকাজের প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে অতিরিক্ত সূর্যের আলো যেন চোখের ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন চশমা ব্যবহার করলেঅতিবেগুনি রশ্মি থেকে প্রতিরক্ষামূলক চশমা ব্যবহার করুন এমন সানগ্লাস পরুন যা অন্তত ৯৯ অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখকে সুরক্ষিত রাখবে মদ্যপান ও ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুনমদ ঠান্ডা পানীয় ও কফি দ্রুত শরীরকে ডিহাইড্রেট বা পানিশূন্য করে দেয় পছন্দের হলেও তাই গরমে যতটা পারা যায় কফি বা ঠান্ডা পানীয় থেকে দূরে থাকুনবরং প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন গরমে দেহের আর্দ্রতা বজায় রাখতে দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত রাস্তার পাশের খাবার এড়িয়ে চলুনগরম এলেই রাস্তার পাশের বিভিন্ন খাবার বিশেষ করে শরবত জুস খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায় এগুলো খাদ্যজনিত নানা রোগ যেমন–ডায়রিয়া ফুড পয়জনিংবমি জন্ডিস ইত্যাদির কারণ হয় তাই এসব এড়িয়ে চলুননিয়মিত গোসল করুনবাইরে থেকে ঘেমে এসে যত দ্রুত সম্ভব গোসল করে ফেলুন কারণ দেহে ঘাম জমে ফাংগাল ইনফেকশন দেখা দিতে পারে অনেকসময় ঘাম বসেগেলে জ্বর সর্দি কাশির মতো সমস্যাও দেখা দেয়আরামদায়ক পোশাক পরুনগরমে সুস্থ থাকতে চাইলে আঁটোসাঁটো পোশাক এড়িয়ে চলুন সুতির নরম পোশাক গরমের জন্য আদর্শ এসময় সিনথেটিক কাপড়ের পোশাক এড়িয়েচলাই ভালো হালকা রঙের পোশাক পরলে গরমে আরাম পাওয়া যায়বেশিক্ষণ এসিতে একদমই নয়গরম লাগলেই এসি অন করে বসে থাকতে ভালোবাসেন দীর্ঘসময়ের জন্য এ কাজটি না করাই ভালো কারণ এসির বাতাস দ্রুত ত্বক ও চুল রুক্ষ করেদেয় যা বেশ ক্ষতিকর এসিতে দীর্ঘক্ষণ থাকতে হলে অন্তত খেয়াল রাখুন ঘরের তাপমাত্রা যেন বাইরের তাপমাত্রার চেয়ে খব বেশি কম না হয় তা না হলেএসি থেকে বের হবার পর গরম লাগার পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে এসবের পাশাপাশি ত্বক ও দেহের যত্ন নিন বাইরে বের হলে স্কার্ফ ছাতা বা টুপি সঙ্গে রাখুন ব্যাগে রাখুন পানি রোদে পোড়া থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে পারেনভালোমানের সানস্ক্রিন লোশন রূপচর্চায় রাখতে পারেন মুলতানি মাটি টমেটোর রস অ্যালোভেরার মতো উপাদান এভাবেই ছোটো ছোটো পদক্ষেপ নিয়ে গরমে সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন তরুণ উজ্জ্বল মোহময় ত্বকের জন্য টিভিতে দেখানো ওই ঝলমলে বিজ্ঞাপন নিয়ে আর বিরক্ত হওয়া লাগবে না আপনার বাজারে হাজারও রূপচর্চার ক্রিম এবং এটা সেটার ভিড়ে ক্লান্ত হয়ে গেলেও এই ১২টি খাবার খেলেই আপনি পেতে পারেন সেই কাঙ্ক্ষিত রূপ১ তেলযুক্ত মাছ (ওমেগা৩ ফ্যাটি অ্যাসিড উচ্চ মানের প্রোটিন ভিটামিন ই এবং জিঙ্ক)ওমেগা৩ ত্বকে প্রদাহ কমায় অর্থাৎ ত্বকে লালভাব এবং ব্রণ কমে যায় ত্বককে ময়েশ্চারাইজ করে এবং সূর্যের ক্ষতিকারক UV রশ্মির প্রতি কম সংবেদনশীল করে তুলতে পারে প্রোটিন ত্বকের কোষগুলোকে শক্তি দেয়জিঙ্ক বা দস্তাকে বলা হয় ত্বকে প্রদাহ নিয়ন্ত্রণ ও নতুন কোষ উৎপাদনের জন্য একটি অত্যাবশ্যকীয় খনিজ পদার্থ ২ মিষ্টি আলু (বিটা ক্যারোটিন)প্রাকৃতিক সানব্লক হিসেবে কাজ করে ৩ ক্যাপসিকাম বা বেল পেপার (বিটা ক্যারোটিন এবং ভিটামিন সি)গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট কোলাজেন তৈরি করতে প্রয়োজনীয় যা ত্বককে শক্তিশালী রাখে ৪ ব্রকলি (ভিটামিন খনিজ সালফোরাফেন এবং ক্যারোটিনয়েড) ত্বকে রিঙ্কল বা ভাঁজ পড়তে দেয় না ত্বকের ক্যান্সার প্রতিরোধ করতে এবং ত্বককে রোদে পোড়া থেকে রক্ষা করে৫ টমেটো (ভিটামিন সি এবং ক্যারোটিনয়েড) ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করেচামড়া কুঁচকে যাওয়া বা বলিরেখা প্রতিরোধে সাহায্য করে৬ সয়া (আইসোফ্ল্যাভোন)বলিরেখা রোধ করে ত্বকের স্থিতিস্থাপকতা ধরে রাখে ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে সেই সাথে ত্বককে অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করে৭ ডার্ক চকলেট (অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট) ত্বককে রোদে পোড়া থেকে রক্ষা করে বলিরেখা রোধ ত্বকের পুরুত্ব স্বাভাবিক রাখে ত্বকের শুষ্কতা রোধ করে ত্বকে রক্ত ​​প্রবাহ বাড়ায় এবং সর্বোপরি ত্বকের গঠন উন্নত করতে পারে৮ সবুজ চা (ক্যাটেচিন–শক্তিশালী অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট)ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করেত্বকের লালভাব কমায় ময়েশচারাইজ করে পুরুত্ব এবং স্থিতিস্থাপকতা উন্নত করে৯ লাল আঙ্গুর (রেসভেরাট্রল)ত্বকের ক্ষতি করে এমন রাসায়নিক পদার্থকে দুর্বল করে আপনার ত্বকের বয়স বাড়ার প্রক্রিয়াকে ধীর করে দিতে পারে তবে এটি থাকে আঙ্গুরের চামড়ায় তাই চামড়া না ফেলে আঙ্গুর খান১০ সূর্যমুখীর বীজ (ভিটামিন ই)গুরুত্বপূর্ণ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট১১ আখরোট (অত্যাবশ্যকীয় চর্বি জিঙ্ক ভিটামিন ই সেলেনিয়াম এবং প্রোটিন)ক্ষত নিরাময় ব্যাকটেরিয়া দমন এবং প্রদাহের বিরুদ্ধে লড়াই করে১২ আভোকাডো (চর্বি ভিটামিন ই এবং সি) ত্বককে সূর্যের অতিবেগুনি রশ্মি থেকে রক্ষা করতে পারেএখন আপনি জানেন কোন কোন খাবার এবং কোন কোন খাদ্য উপাদান আপনার ত্বককে সজীব এবং তারুণ্যদীপ্ত রাখে তাই হাতের কাছে এই পুষ্টি উপাদানগুলো সম্পন্ন যা খাবার আছে সেগুলোর দিকে নজর দিন আপনার রূপচর্চার রুটিনে অন্তর্ভুক্ত করুন স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস ত্বকে থাকা সেবাসিয়াস গ্রন্থি থেকে অতিরিক্ত সিবাম উৎপাদনের জন্য ত্বক তৈলাক্ত হয় সিবাম হলো চর্বি দিয়ে তৈরি একটি তৈলাক্ত পদার্থ যার কাজ ত্বককে রক্ষা এবং ময়েশ্চারাইজ করা এবং আপনার চুলকে চকচকে এবং স্বাস্থ্যকর রাখা তবে অত্যাধিক সিবাম ত্বকের ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র ছিদ্রে আটকে জমে যেতে পারে এবং এতে ব্রণ হতে পারে জেনেটিক কারণ হরমোনের পরিবর্তন এমনকি স্ট্রেস বা মানসিক চাপে সিবামের উৎপাদন বাড়াতে পারেতৈলাক্ত ত্বকের যত্ন করা জটিল বিভিন্ন ওষুধ বা ব্যয়বহুল ক্রিম প্যাক এবং নানান কঠিন পদ্ধতিগুলো ব্যবহার না করে আপনি বাড়িতে বসে এই ১০টি প্রাকৃতিক পথ্য ব্যবহার করতে পারেন ১ মুখ ধোয়াদিনে ন্যূনতম দুইবার তৈলাক্ত মুখ ধোয়া উচিত বেশি ক্ষারীয় সাবান এড়িয়ে চলুন এরচেয়ে মৃদু সাবান যেমন গ্লিসারিন সমৃদ্ধ সাবান ব্যবহার করুন২ মধুমধু জীবাণু প্রতিরোধ করে এবং ত্বকের আর্দ্রতা ধরে রাখতে সাহায্য করে ব্রণ এবং তৈলাক্ত ত্বকে সরাসরি মুখের ওপর মধু মাখুন প্রায় ১০ মিনিট অপেক্ষা করে মধু শুকিয়ে গেলে উষ্ণ পানি দিয়ে ভালোভাবে মুখ ধুয়ে ফেলুন৩ ডিমের সাদা অংশ এবং লেবুলেবু এবং অন্যান্য সাইট্রাস ফল তেল শোষণ করতে সাহায্য করে এছাড়াও লেবুর অ্যান্টিব্যাক্টেরিয়াল ক্ষমতাও আছেডিম লেবুর প্যাক বানাতে ১টি ডিমের সাদা অংশে ১চা চামচ লেবু রস মেশান এবারে এটি আপনার মুখে লাগিয়ে নিন এবং শুকিয়ে না হওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করুন শুকিয়ে গেলে হালকা গরম পানিতে মুখ ধুয়ে নিন তবে যাদের ডিমে এলার্জি আছে তাদের জন্য এই প্রক্রিয়াটি এড়িয়ে চলাই ভালো৪ কাজুবাদামকাজুবাদামের গুড়ো ত্বকের মৃত কোষ পরিষ্কার বা এক্সফলিয়েট করে এটি অতিরিক্ত তেল শুষে নিতেও সাহায্য করে বাদামের স্ক্রাব তৈরি করতে ৩চা চামচ গুড়ো করা কাঁচা বাদামে ২ টেবিল চামচ কাঁচা মধু মিশিয়ে নিন স্ক্রাবটি আপনার মুখে আস্তে আস্তে হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয় বৃত্তাকারভাবে প্রয়োগ করুন এটি শুকিয়ে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে উষ্ণ পানিতে ধুয়ে ফেলুন তবে বাদামে এলার্জি থাকলে এটি ব্যবহার করা যাবে না৫ ঘৃতকুমারী বাঁ অ্যালোভেরাঅ্যালো ভেরা ত্বকের শুষ্কতা প্রতিরোধ করে রাতে ঘুমানোর আগে আপনার মুখে পাতলাভাবে ঘৃতকুমারী প্রয়োগ করুন এবং সকাল পর্যন্ত রেখে দিন তবে আপনার ত্বক অতিরিক্ত সংবেদনশীল হলে অ্যালোভেরা ব্যবহার করবেন না আপনি যদি আগে অ্যালোভেরা ব্যবহার না করে থাকেন তবে আপনার হাতে অল্প পরিমাণ মেখে নিন ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে সেখানে যদি কোনো প্রতিক্রিয়া দেখা না যায় তবে আপনি নিশ্চিন্তে অ্যালোভেরা] ব্যবহার করতে পারেন৬ টমেটোত্বকে অতিরিক্ত তেল এবং ত্বকের ছিদ্রগুলোতে ময়লা জমে বন্ধ হয়ে গেলে সেগুলো পরিষ্কার করতে টমেটো সাহায্য করে টমেটো দিয়ে একটি এক্সফলিয়েটিং মাস্ক তৈরি করতে ১টি টমেটোর রসের সঙ্গে ১ চা চামচ চিনি মিশান এরপর গালের ওপর বৃত্তাকারভাবে ম্যাসেজ করুন এবং ৫ মিনিটের জন্য রেখে দিন মাস্কটি শুকিয়ে গেলে উষ্ণ পানিতে খুব ভালোভাবে মুখ ধুয়ে নিন৭ ব্লটিং পেপারব্লটিং পেপার হলো পাতলা কাগজের মতো যা আপনার ত্বক থেকে অতিরিক্ত তেল শুষে নেয় আপনার ত্বকের তৈলাক্তভাব যখনই আপনাকে অস্বস্তি দেবে তখনই অথবা সারাদিন প্রয়োজনমতো ব্যবহার করুন ব্লটিং পেপার ৮ কসমেটিক ক্লে বা কাদামাটিকসমেটিক ক্লে ত্বকের তেল শোষণ করতে ব্যবহৃত হয় ফরাসি সবুজ কাদামাটি তৈলাক্ত ত্বক এবং ব্রণের জন্য বেশ উপকারী কসমেটিক ক্লে দিয়ে মাস্ক তৈরি করতে চাইলে–প্রায় এক চা চামচ মাটিতে ফিল্টারের পানি বা গোলাপজল মিশাতে থাকুন যতক্ষণ না এটি মাখা মাখা বা পুডিংয়ের মতো হয় আপনার মুখে এই মিশ্রণটি লাগান এবং শুকিয়ে যাওয়া পর্যন্ত রেখে দিন এরপর হালকা গরম পানি দিয়ে কাদামাটি ধুয়ে ফেলুন৯ ওটসওটমিল ত্বকের অতিরিক্ত তেল শোষণ এবং এক্সফোলিয়েট করতে সাহায্য করেআপনার মুখে ওটমিল ব্যবহার করতে ১/২ কাপ গুড়ো করা ওটস গরম পানিতে মিশিয়ে একটি পেস্ট তৈরি করুন মিশ্রনটিতে নেড়ে নেড়ে ১ টেবিল চামচ মধু দিন প্রায় তিন মিনিট ধরে এই ওটমিলের মিশ্রণটি আপনার মুখে ম্যাসাজ করুন এরপর গরম পানি দিয়ে ধুয়ে ফেলুন এবং মুখ শুকিয়ে নিন মাঝে মাঝে আপনি এটি ১০১৫ মিনিটও রেখে দিতে পারেন১০ জোজোবা তেল জোজোবা তেল দিয়ে তৈরি মাস্ক সপ্তাহে দুই থেকে তিনবার প্রয়োগ করলে ত্বকের হালকা ব্রণগুলো কমে আসে তবে এটি খুব বেশি ব্যবহার করলে তৈলাক্ত ত্বকে হিতে বিপরীত হতে পারে বৈশাখ মাস চলছে ইতোমধ্যেই প্রচণ্ড তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে দেশের বিভিন্ন জেলার ওপর দিয়ে কদিন পর হয়তো তাপমাত্রা বাড়বে আরও বেশি তাই সুস্থ থাকতে এখন থেকেই প্রস্তুতি নেওয়া আবশ্যক স্বাস্থ্যকর ও হালকা খাবার গ্রহণ করুনগরমে সুস্থ থাকতে চাইলে ভারী খাবার এড়িয়ে চলুন খাদ্যতালিকায় যোগ করুন হালকা ও স্বাস্থ্যকর খাবার একেবারে অনেক খাবার না খেয়েকিছু সময় পরপর অল্প করে খাওয়ার অভ্যাস করুন ভারী খাবারে বেশি পরিমাণ কার্বোহাইড্রেট ও ফ্যাট থাকে যা দেহের তাপমাত্রা বাড়িয়ে দেয়এসবের পরিবর্তে খেতে পারেন সতেজ ফল ও সবজি যাতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণ পানি কমলা তরমুজ টমেটো ইত্যাদি এক্ষেত্রে বেশ উপকারীচোখের সুরক্ষা বজায় রাখুনকাজের প্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের হলে অতিরিক্ত সূর্যের আলো যেন চোখের ক্ষতি করতে না পারে সেদিকে খেয়াল রাখুন চশমা ব্যবহার করলেঅতিবেগুনি রশ্মি থেকে প্রতিরক্ষামূলক চশমা ব্যবহার করুন এমন সানগ্লাস পরুন যা অন্তত ৯৯ অতিবেগুনি রশ্মি থেকে চোখকে সুরক্ষিত রাখবে মদ্যপান ও ক্যাফেইন এড়িয়ে চলুনমদ ঠান্ডা পানীয় ও কফি দ্রুত শরীরকে ডিহাইড্রেট বা পানিশূন্য করে দেয় পছন্দের হলেও তাই গরমে যতটা পারা যায় কফি বা ঠান্ডা পানীয় থেকে দূরে থাকুনবরং প্রচুর পরিমাণ পানি পান করুন গরমে দেহের আর্দ্রতা বজায় রাখতে দিনে অন্তত ২ থেকে ৩ লিটার পানি পান করা উচিত রাস্তার পাশের খাবার এড়িয়ে চলুনগরম এলেই রাস্তার পাশের বিভিন্ন খাবার বিশেষ করে শরবত জুস খাওয়ার পরিমাণ বেড়ে যায় এগুলো খাদ্যজনিত নানা রোগ যেমন–ডায়রিয়া ফুড পয়জনিংবমি জন্ডিস ইত্যাদির কারণ হয় তাই এসব এড়িয়ে চলুননিয়মিত গোসল করুনবাইরে থেকে ঘেমে এসে যত দ্রুত সম্ভব গোসল করে ফেলুন কারণ দেহে ঘাম জমে ফাংগাল ইনফেকশন দেখা দিতে পারে অনেকসময় ঘাম বসেগেলে জ্বর সর্দি কাশির মতো সমস্যাও দেখা দেয়আরামদায়ক পোশাক পরুনগরমে সুস্থ থাকতে চাইলে আঁটোসাঁটো পোশাক এড়িয়ে চলুন সুতির নরম পোশাক গরমের জন্য আদর্শ এসময় সিনথেটিক কাপড়ের পোশাক এড়িয়েচলাই ভালো হালকা রঙের পোশাক পরলে গরমে আরাম পাওয়া যায়বেশিক্ষণ এসিতে একদমই নয়গরম লাগলেই এসি অন করে বসে থাকতে ভালোবাসেন দীর্ঘসময়ের জন্য এ কাজটি না করাই ভালো কারণ এসির বাতাস দ্রুত ত্বক ও চুল রুক্ষ করেদেয় যা বেশ ক্ষতিকর এসিতে দীর্ঘক্ষণ থাকতে হলে অন্তত খেয়াল রাখুন ঘরের তাপমাত্রা যেন বাইরের তাপমাত্রার চেয়ে খব বেশি কম না হয় তা না হলেএসি থেকে বের হবার পর গরম লাগার পরিমাণ আরো বেড়ে যাবে এসবের পাশাপাশি ত্বক ও দেহের যত্ন নিন বাইরে বের হলে স্কার্ফ ছাতা বা টুপি সঙ্গে রাখুন ব্যাগে রাখুন পানি রোদে পোড়া থেকে বাঁচতে ব্যবহার করতে পারেনভালোমানের সানস্ক্রিন লোশন রূপচর্চায় রাখতে পারেন মুলতানি মাটি টমেটোর রস অ্যালোভেরার মতো উপাদান এভাবেই ছোটো ছোটো পদক্ষেপ নিয়ে গরমে সুস্থ থাকুন ভালো থাকুন ঘাড়ে হুটহাট টান লেগে ব্যথা হওয়া–এটা আমাদের সাথে হরহামেশাই ঘটে দৈনন্দিন চলাফেরা এবং নানা কাজে ভুল অঙ্গভঙ্গি এবং পেশির ওপর ভুলভাবে চাপ পড়ার কারণে আমরা অনেকেই ঘাড়ব্যথার শিকার হই শুধুমাত্র সঠিকভাবে দাঁড়ানো বসা বা শোয়ার ভঙ্গি পরিবর্তন করেই বেশিরভাগ সময় ঘাড়ব্যথা থেকে মুক্ত থাকা সম্ভব পাশাপাশি যদি ঘাড়ব্যথা হয়েই যায় তাহলে ঘাড়ের পেশিগুলোকে দুই একদিন বিশ্রাম দিলেই সাধারণত ব্যথা চলে যায়তবে এজাতীয় ঘরোয়া চিকিৎসায় আপনার ঘাড়ের ব্যথার উন্নতি না হলে এবং ব্যথা দীর্ঘমেয়াদি হলে অতিসত্বর ডাক্তার দেখানো উচিতযদি আপনার ঘাড়ে সামান্য ব্যথা থাকে বা শক্ত হয়ে থাকে তা উপশম করতে এই সহজ পদক্ষেপগুলো নিতে পারেনপ্রথম কয়েকদিন বরফ লাগান এরপরে একটি হিটিং প্যাড বা গরম তোয়ালে দিয়ে ছেঁক নিয়ে কিংবা গরম পানিতে গোসল করে ঘাড়ে তাপ প্রয়োগ করতে পারেনডাক্তারের পরামর্শমতো আইবুপ্রোফেন বা প্যারাসিটামলের মতো ব্যথা উপশমকারী ওষুধ গ্রহণ করতে পারেন আপনার ঘাড়ের ব্যথা বাড়িয়ে দেয় এমন কাজ যেমন খেলাধুলা ব্যায়াম ভারোত্তলন–এসব থেকে কয়েক দিন দূরে থাকুন এই কাজগুলোতে পুনরায় ফেরার সময় ধীরে ধীরে শুরু করুনপ্রতিদিন ঘাড়ের ব্যায়াম করুন ধীরে ধীরে আপনার মাথা ডানেবায়ে এবং ওপরেনিচে ঘোরানওঠা বসা শোয়া চলাফেরা এবং প্রাত্যাহিক কার্যকলাপে শরীরকে সঠিক ভঙ্গিতে রাখার অভ্যাস করুন কুঁজো হয়ে হাঁটা অনেকক্ষণ ফোন বা কম্পিউটারের দিকে ঘাড় নিচু করে তাকিয়ে থাকা কিংবা আঁকাবাঁকা হয়ে শোয়ার অভ্যাস ত্যাগ করতে হবেঘাড় এবং কাঁধের মাঝে মোবাইল ফোন রেখে কাজ করা এড়িয়ে চলুনএকইভাবে বেশিক্ষণ দাঁড়াবেন না বা বসবেন না ঘনঘন আপনার অবস্থান এবং অঙ্গভঙ্গি পরিবর্তন করুন ঘাড়ের মৃদু মাসাজ নিতে পারেনঘুমের জন্য বিশেষ ধরনের বালিশ ব্যবহার করুন যা ঘাড়কে সঠিক অবস্থানে রাখেডাক্তারের পরামর্শ ছাড়া ঘাড়ের বন্ধনী বা কলার ব্যবহার করবেন না কারণ এটি যদি আপনি সঠিকভাবে ব্যবহার না করেন তবে তা আপনার ঘাড়ের ব্যথাকে আরও তীব্র করে তুলতে পারেবেশিরভাগ সময় ঘাড়ের ব্যথা কয়েক দিনে কমে যেতে পারে এবং গুরুতর হয় না কিন্তু কিছু ক্ষেত্রে ঘাড়ের ব্যথা গুরুতর আঘাত বা অসুস্থতার লক্ষণ হতে পারে যদি আপনার ঘাড়ে ব্যথা থাকে যা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে গুরুতর হয় বা অন্যান্য উপসর্গের সাথে ঘাড়ের ব্যথাও থাকে তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসকের পরামর্শ নিন ফিজিওথেরাপি শব্দটির সাথে আজকাল আমরা সবাই কম বেশি পরিচিত ফিজিওথেরাপি শব্দটিতে রয়েছে দুটি অংশ ফিজিও বা ফিজিকাল এবং থেরাপি কেমোথেরাপিতে যেমন হয় ওষুধ দিয়ে রোগের উপশম করা হয় সেরকমই ফিজিও থেরাপিতে নানান শারীরিক ব্যায়ামের মাধ্যমে রোগ নিরাময় করা হয়ফিজিওথেরাপির মূল লক্ষ্য হলো দৈনন্দিন জীবনে আমাদের চলাফেরা যেন ব্যথামুক্ত হয় ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে আমরা যেসব সমস্যা থেকে নিরাময় পেতে পারি সেগুলো হলো–১ বিভিন্ন ধরনের মাথা ঘাড় কাঁধ পিঠ কোমর ও হাঁটুর ব্যথা২ বাতব্যথা ৩ আঘাতজনিত ব্যথা ৪ প্যারালাইসিস৫ সড়ক দুর্ঘটনার আঘাত ৬ শারীরিক প্রতিবন্ধতা ৭ বিকলাঙ্গতা ৮ পক্ষাঘাত ৯ স্পোর্টস ইনজুরিরএ ছাড়াও বড়ো কোনো অস্ত্রোপচারের পর রোগীর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসার অন্যতম প্রধান চিকিৎসাই হলো ফিজিওথেরাপিএকজন ফিজিথেরাপিস্ট প্রাথমিকভাবে আপনার শারীরিক অবস্থাকে মূল্যায়ন এবং রোগ নির্ণয় করে আপনার উপযোগী ব্যায়ামের পরামর্শ দিবেন যা আপনাকে সক্রিয় এবং সুস্থ করে তুলবেতবে খেয়াল রাখতে হবে ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা ও পরামর্শের জন্য অবশ্যই একজন বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের কাছে যেতে হবে অনেক সময় হাসপাতালে বা ক্লিনিকে ভর্তি থেকেও ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা নিতে হয় সেক্ষেত্রে রোগী দ্রুত আরোগ্য লাভ করেবাংলাদেশে প্রতিদিন গড়ে প্রায় পাঁচ লাখ মানুষ ফিজিওথেরাপি চিকিৎসার নিয়ে থাকেন কিন্তু এর মধ্যে শতকরা প্রায় ৯০ ভাগ সঠিক ফিজিওথেরাপি চিকিৎসা পান না এবং অপচিকিৎসার শিকার হন আমাদের দেশে এই চিকিৎসাসেবাতে বিভিন্ন মহলের অপপ্রচার ও অনভিজ্ঞ লাইসেন্সহীন অসাধু লোকের জন্য সাধারণ মানুষ সঠিক চিকিৎসা সেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছেতাই শারীরিক ব্যথাহীন আনন্দময় জীবনের জন্য কিংবা বিভিন্ন মেকানিক্যাল অসুস্থতা থেকে নিরমায় পেতে বিশেষজ্ঞ ফিজিওথেরাপিস্টের কাছে যাওয়া আমাদের সকলের জন্যই ভালো আমরা মাঝে মাঝেই ঘাড়ে ব্যথা অনুভব করি কিছু কিছু ক্ষেত্রে এসব ঘাড়ের ব্যথা খুব গুরুতর কিছু নয় এবং তা কয়েক দিনের মধ্যে সেরেও যায় কিন্তু অনেক সময় ঘাড়ের ব্যথা গুরুতর আঘাত বা অসুস্থতার লক্ষণও হতে পারেযেসব কারণে ঘাড় ব্যাথা হয়১ ঘাড়ের পেশিতে টান এবং চাপ লাগলে দৈনন্দিন কার্যকলাপে ভুল অভ্যাসের কারণে ঘাড় ব্যথা হতে পারে যেমন–ভুল ভঙ্গিতে বসা বা শোয়া বা কাজ করা অবস্থান পরিবর্তন না করে খুব বেশি সময় ধরে ডেস্কে কাজ করা ঘুমের সময় বেকায়দায় ঘাড় রাখা এবং ব্যায়ামের সময় ঘাড়ে ঝাঁকুনি লাগা২ আঘাতপড়ে যাওয়া গাড়ি দুর্ঘটনা এবং খেলাধুলার বিভিন্ন আঘাতে ঘাড় অধিকতর ঝুঁকিতে থাকে অন্যদিকে ঘাড়ের হাড় (সারভাইকাল কশেরুকা) ভেঙে গেলে মেরুদণ্ডও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে হঠাৎ মাথার ঝাঁকুনি থেকে ঘাড়ের আঘাতকে সাধারণত হুইপ্ল্যাশ বা কশাঘাত বলা হয়৩ হার্ট অ্যাটাকহঠাৎ হার্ট অ্যাটাক হলে কিংবা রক্তচাপ অনেক বেশি বেড়ে গেলে ঘাড় ব্যথা হতে পারে যার সাথে অন্যান্য উপসর্গগুলোও দেখা দেয় যেমন–হাঁপানি ঘাম বমি বমি ভাব বা বমি হওয়া বাহু বা চোয়াল ব্যথা এ অবস্থায় অনতিবিলম্বে হাসপাতালে যেতে হবে৪ মেনিনজাইটিসমস্তিষ্ক এবং মেরুদণ্ডকে ঘিরে থাকে এক ধরনের পাতলা টিস্যু এই পাতলা টিস্যুতে জীবানুর সংক্রমণ বা প্রদাহকে মেনিনজাইটিস বলে মেনিনজাইটিসের লক্ষণগুলো হলো মাথাব্যথা বমি বমি ভাব বা বমি আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা জ্বর মেনিনজাইটিস জীবনঘাতি হয়ে উঠতে পারে তাই কারো যদি মেনিনজাইটিসের লক্ষণ থাকে তবে অবিলম্বে চিকিৎসা কেন্দ্রে যেতে হবে৫ ঘাড় এবং এর পার্শ্ববর্তী এলাকার অসুস্থতা যাতে ঘাড়ের পেশি বা হাড়ে বেশি চাপ পড়েকিছু রোগ আছে যেগুলোতে ঘাড় এবং এর আশেপাশের পেশিগুলো দুর্বল হয়ে যায় ফলে ঘাড়ের হাড়ের ওপর মাথার ওজন বেশি পড়ে যেমনরিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস বা বাত এই রোগে ব্যথা হাড়ের জয়েন্ট ফুলে যাওয়া এবং হাড়ের অস্বাভাবিকতা হয় ঘাড় বা এর আশেপাশে এগুলো হলে ঘাড়ে ব্যথা হতে পারেঅস্টিওপোরোসিস এতে হাড় দুর্বল হয় এবং তাতে ছোটো ছোটো ফাটল হতে পারে অস্টিওপোরোসিস প্রায়শই হাতে বা হাঁটুতে ঘটে তবে এটি ঘাড়েও হতে পারে যার ফলে সৃষ্টি হয় ব্যথাস্পন্ডিলাইটিস আপনার বয়স বাড়ার সাথে সাথে সার্ভিকাল ডিস্ক ক্ষয়ে যেতে পারে এটি স্পন্ডিলাইটিস বা ঘাড়ের অস্টিওআর্থারাইটিস নামে পরিচিত এটি কশেরুকাগুলোর মাঝে জায়গা কমিয়ে দেয় এবং জয়েন্টগুলোতে চাপ দেয়স্লিপড ডিস্ক যেকোনো ট্রমা বা আঘাত থেকে যখন কশেরুকার একটি ডিস্ক বেরিয়ে আসে তাতে মেরুদণ্ডের ওপর চাপ পড়তে পারে একে হার্নিয়েটেড সার্ভিকাল ডিস্ক বলা হয় যা ফেটে যাওয়া বা স্লিপড ডিস্ক নামেও পরিচিতস্পাইনাল স্টেনোসিস স্পাইনাল স্টেনোসিস ঘটে যখন মেরুদণ্ড সরু হয়ে আসে এবং তাতে চাপ পড়ে এটি আর্থ্রাইটিস বা অন্যান্য অসুস্থতার কারণে দীর্ঘমেয়াদি প্রদাহ থেকে হতে পারেজীবাণুর সংক্রমণঘাড়ের চামড়ার ওপরে বা ভেতরে ফোড়াটিউমারমেরুদণ্ডের ক্যান্সারতাই ঘাড়ে ব্যথা বিশেষ করে দীর্ঘস্থায়ী ব্যথার ক্ষেত্রে ঘরে বসে না থেকে ডাক্তারের পরামর্শ নিন হতে পারে আপনার ঘাড়ে ব্যথা শরীরের অন্য কোনো জটিল সমস্যার জানান দিচ্ছে আমাদের ঘাড় খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি অঙ্গ ঘাড়ের হাড় পেশি এবং লিগামেন্টসমূহ আমাদের মাথার ভার বহন করে এবং তার চলন নিয়ন্ত্রণ করে এই অংশগুলোতে যেকোনো অস্বাভাবিকতা প্রদাহ বা আঘাত হয়ে উঠতে পারে ঘাড় ব্যথার কারণঘাড়ের ব্যথার লক্ষণগুলোর তীব্রতা এবং স্থায়িত্বকাল এক এক রকম প্রায়শই ঘাড়ের ব্যথা সহনশীল পর্যায়ের হয় এবং মাত্র কয়েক দিন বা সপ্তাহ স্থায়ী হয় আবার এটি দীর্ঘস্থায়ীও হতে পারে তবে ঘাড়ের ব্যথা হালকা বা তীব্র যাইহোক না কেন–তা কিন্তু আমাদের দৈনন্দিন জীবনে প্রভাব ফেলে ঘাড় ব্যথার নানানরকম লক্ষণ রয়েছেঅনেকের ঘাড় ব্যথায় তাদের ঘাড় শক্ত বা আটকে যাওয়ার অনুভুতি হয় এই অবস্থায় ঘাড়ের নড়াচড়াও সীমিত হয়অনেকের ক্ষেত্রে ব্যথাটি তীক্ষ্ণ বা ছুরিকাঘাতের ব্যথার মতো অনুভূত হয় ঘাড়ের যেকোনো একটি নির্দিষ্ট অংশেঘাড়কে ওপরে নিচে ডানে বায়ে ঘাড় নাড়াতে গেলে বা বাঁকালে ঘাড়ের ব্যথা তীব্রভাবে অনুভব হয়ঘাড়ের ব্যথা ছড়িয়ে যাওয়া অথবা অসাড়তা ঘাড়ের ব্যথা আপনার মাথা কাঁধ এবং বাহুতে ছড়িয়ে যেতে পারে যদি আপনার ঘাড়ে ব্যথা কোনো স্নায়ুর জটিলতার জন্য হয় তাহলে আপনি বাহু বা হাতে অসাড়তা শিহরণ বা দুর্বলতা অনুভব করতে পারেন এক্ষেত্রে ঘাড়ে একটি জ্বলন্ত বা তীক্ষ্ণ ব্যথার মতো শুরু হয় যা হাত পর্যন্ত ছড়িয়ে যায় আপনি যদি এই উপসর্গটি অনুভব করেন তবে একজন ডাক্তারের সাথে দ্রুত পরামর্শ করুনঘাড়ে ব্যথা শুরু হলে তা সার্ভিকোজেনিক মাথাব্যথা নামক মাথাব্যথাও তৈরি করতে পারে মাথা ব্যথার সাথে ঘাড়ে ব্যথা মাইগ্রেনের মাথাব্যথার লক্ষণ হতে পারেঅনেক সময় ডাক্তারের কাছে মেরুদণ্ড পরীক্ষা করার কারণেও ঘাড়ের ব্যথা বাড়তে পারেযদি আপনার ঘাড়ে ব্যথা থাকে যা এক সপ্তাহেরও বেশি সময় ধরে চলতে থাকে এবং গুরুতর হয় বা অন্যান্য উপসর্গের সাথে থাকে তাহলে অবিলম্বে চিকিৎসার পরামর্শ নিন ব্যাক পেইন শব্দটি আমরা আজকাল বেশ শুনতে পাই এই ব্যাক পেইন বা পিঠ ব্যথা সাধারণত নিচের পিঠের পেশি লিগামেন্ট মেরুদণ্ড কশেরুকার সমস্যা থেকে তৈরি হয় পিঠ ব্যথার কারণগুলোর ভেতর সবচেয়ে বেশি থাকে পিঠের পেশিতে চাপ পড়া এবং পিঠের কাঠামোগত সমস্যা চলুন জেনে নেওয়া যাক পিঠ ব্যথা বা ব্যাকপেইনের কারণগুলো কী কী ১ পিঠের পেশিতে চাপ বা স্ট্রেইন পিঠের পেশিতে অতিরিক্ত চাপ ভারী বস্তু ভুলভাবে উত্তোলন এবং ভুল ভঙ্গিতে শরীরের আকস্মিক নড়াচড়াতে প্রায়ই পিঠে ব্যথা করে অতিরিক্ত কাজ করার ফলেও পেশিতে চাপ পড়তে পারে ২ কাঠামোগত সমস্যা কশেরুকা হলো মেরুদণ্ডকে ঘিরে থাকা চাকতি আকারের হাড় এই হাড়গুলো একে অপরের সাথে সংযুক্ত প্রতিটি কশেরুকার মধ্যবর্তী স্থানগুলোতে ডিস্ক নামক টিস্যু থাকে এবং কশেরুকাগুলোকে চারপাশ থেকে ঘিরে রাখে এই ডিস্কে আঘাত পিঠে ব্যথার সাধারণ কারণকখনো কখনো এই ডিস্কগুলো ফুলে যেতে পারে বেরিয়ে পড়তে পারে (হার্নিয়েট হওয়া) অথবা ফেটে যেতে পারে এসব ক্ষেত্রে মেরুদণ্ডের স্নায়ুতে চাপ পড়ে এগুলোর মাঝে সবচেয়ে বেশি ব্যথা হয় হার্নিয়েটেড ডিস্ক বা ডিস্কগুলো কশেরুকা থেকে বেরিয়ে গেলে বেরিয়ে পড়া ডিস্ক স্নায়ুতে চাপ দিলে পিঠ বা কোমর থেকে পা পর্যন্ত ব্যথা শিরশিরে অনুভুতি এবং অল্প থেকে প্রচণ্ড পরিমাণ ব্যথা হতে পারে৩ বাত বা আর্থ্রাইটিস স্পাইনাল অস্টিওআর্থারাইটিস পিঠে ব্যথার একটি সম্ভাব্য কারণ এই রোগে আপনার পিঠের নিচের জয়েন্টগুলোর কারটিলেজের অবনতি ঘটে যার কারণে মেরুদণ্ড চেপে আসতে পারে বা সংকীর্ণ হতে পারে যা ব্যথার কারণ৪ অস্টিওপোরোসিস হাড়ের ঘনত্ব হ্রাস এবং হাড় পাতলা হয়ে যাওয়াকে অস্টিওপোরোসিস বলা হয় এতে আপনার কশেরুকার ছোটো ছোটো ফাটল হতে পারে যেগুলো গুরুতর ব্যথার কারণ৫ পিঠে ব্যথার অন্যান্য কারণওপরে দেওয়া কারণগুলোর বাইরেও আরো কিছু কারণেও আপনার ব্যাকপেইন বা পিঠে ব্যথা হতে পারে – ডিজেনারেটিভ স্পন্ডিলোলিস্থেসিস একটি কশেরুকা তার স্থান থেকে সরে গিয়ে কাছাকাছি একটি কশেরুকার দিকে চলে যাওয়া – কাউডা ইকুইনা সিন্ড্রোম মেরুদণ্ডের নিচের অংশে স্নায়ুর কার্যকারিতা হ্রাস পাওয়া– মেরুদণ্ডের ছত্রাক বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণ– মেরুদণ্ডে ক্যান্সার বা টিউমার– কিডনি সংক্রমণ বা কিডনি পাথরব্যাকপেইন যন্ত্রণাদায়ক এবং এটি কাজের ক্ষমতা হ্রাস করে দেয় তাই আপনি যদি অনেকদিন ধরে ঘনঘন পিঠের ব্যথা অনুভব করেন তবে একজন ডাক্তারের সাথে দেখা করতে ভুলবেন না পিঠ ব্যথা প্রতিরোধে সবচেয়ে জরুরী হলো আপনার পিঠের উপর চাপ কমানো তাই দৈনন্দিন চলাফেরা এবং কাজকর্মের সময় আপনার দেহভঙ্গীর দিকে খেয়াল রাখুন কিছু কাজ আছে যেগুলিকে আপনার দৈনন্দিন জীবনে অভ্যাসে পরিণত করতে পারলে পিঠে ব্যাথা বা ব্যাকপেইন থেকে সহজেই দূরে থাকা সম্ভব চলুন এমন নয়টি অভ্যাস সম্পর্কে জেনে নিই ১ কম ওজন বহন করুন ভারী ব্রিফকেস ল্যাপটপ ব্যাগ স্যুটকেস কিংবা বাজারের ব্যাগ এগুলি আপনার ঘাড় এবং মেরুদণ্ডে অপ্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগ করতে পারে তাই শুধুমাত্র প্রয়োজনীয় জিনিসই বহন করুন এমন ব্যাগ ব্যবহার করুন যা পিঠে ঘাড়ে কাঁধে সমানভাবে ভর বিতরণ করে যেমন ব্যাকপ্যাক যা দুই কাঁধে নেয়ার মত ভারী কিছু বহন করতে চাইলে প্রয়োজনে চাকাওয়ালা ব্যাগ ব্যবহার করুন২ ব্যায়াম করুনআপনার পেট এবং পিঠের চারপাশের পেশীগুলি আপনাকে সোজা থাকতে সাহায্য করে এবং পুরো শরীরের ভার বহন করতে সহায়তা করে তাই এগুলিকে শক্তিশালী করে আপনার পিঠে ব্যথা বা ক্ষতি হওয়ার সম্ভাবনা কমাতে পারেন সপ্তাহে অন্তত কয়েকবার পেট ও পিঠের ব্যায়াম করুন৩ সোজা হোনসঠিক দেহভঙ্গী আপনার মেরুদন্ডকে সুস্থ রাখে এবং সঠিকভাবে কাজ করতে সহায়তা করে দেহভঙ্গি সঠিক না হলে তা আপনার মেরুদন্ডে অপ্রয়োজনীয় চাপ প্রয়োগ করে যারা দীর্ঘক্ষণ অফিসে কিংবা কম্পিউটারের সামনে কাজ করেন তাদের ব্যাকপেইন হবার সম্ভাবনা অন্যদের চেয়ে অনেক বেশি থাকে তাই চেয়ারে বসার সময় হয়ে বসতে হবে দাড়ানোর সময়ও সোজা হয়ে দাড়াতে হবে ফোন ব্যবহারের সময় চেষ্টা করতে হবে যেন তা মাথা সোজা রেখে ব্যবহার করা হয় কম্পিউটারের মনিটর প্রয়োজনে উচু করে নিতে হবে যেন মাথা ও শিরদাড়া সোজা রেখে কাজ করা যায় ৪ টেবিলের উপর ঝুঁকে পড়বেন নাঅফিসের চেয়ারে বসার সময় কিংবা দাঁড়ানোর সময় ঝুঁকে যাবেন না বিশেষ করে যদি আপনি প্রতিদিন কয়েক ঘন্টার বেশি বসে থাকেন বা ডেস্ক জব করেন তাহলে ঠিকভাবে বসা এবং আপনার পিঠকে পেছন থেকে সঠিকভাবে চাপ দিয়ে রাখাটা গুরুত্বপূর্ণ বসার চেয়ারটা ভাল হওয়া খুব জরুরী এমন চেয়ার বেছে নিন যা আপনার পিঠের নীচের দিককে সঠিক ভাবে চাপ দিয়ে রাখতে পারবে খেয়াল রাখতে হবে যেন আপনি বসলে আপনার হাঁটু আপনার নিতম্বের থেকে একটু উঁচুতে থাকে৫ প্রায়ই নড়ে চড়ে বসুন উঠুনদীর্ঘ সময় ধরে এক জায়গায় দাঁড়িয়ে থাকা বসা বা শুয়ে থাকা আপনার পিঠের জন্য স্বাস্থ্যকর নয় আপনি যখনই পারেন বসা থেকে উঠে হাঁটাহাঁটি করে এবং কিছু সাধারণ হাল্কা স্ট্রেচ করে পেশী এবং হাড় এবং মেরদন্ডকে চাপ থেকে মুক্তি দিন এটি আপনার পিঠে রক্ত ​​সঞ্চালন বাড়িয়ে দেয় এবং সুস্থ রাখে ৬ জুতা বদলানহাইহিলের জুতা আপনার পিঠের ক্ষতির কারণ হতে পারে বিশেষ করে তা যদি নিয়মিত পরেন তাই অল্প উচ্চতার সমান তলিওয়ালা জুতা বা স্যান্ডেল ব্যবহার করুন ৭ আপনার ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গ্রহণের পরিমাণ বাড়ানপর্যাপ্ত পরিমাণে ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি গ্রহণ করে আপনার মেরুদন্ডের হাড় মজবুত রাখুন ক্যালসিয়াম অস্টিওপরোসিস প্রতিরোধ করতে সাহায্য করতে পারে যা বিশেষ করে নারীদের পিঠে ব্যথার একটি বড় কারণ দুধ দই শাকে আপনি পাবেন ক্যালসিয়াম এবং ভিটামিন ডি পাবেন চর্বিযুক্ত মাছ ডিমের কুসুম গরুর যকৃত বা কলিজা কিংবা পনিরে এছাড়াও বিভিন্ন ধরণের ক্যালসিয়াম বড়ি পাওয়া যায় যা কার্যকত তবে ভিটামিনের বড়ি খাওয়ার আগে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিয়ে নিতে হবে৮ সিগারেটটা বাদ দিনধূমপান গুরুতর স্বাস্থ্য ঝুঁকি তৈরি করতে পারে এবং এটি ব্যাকপেইনও বাড়িয়ে তুলতে পারে নিকোটিন মেরুদন্ডের ডিস্কগুলিতে রক্ত ​​প্রবাহকে সীমিত করে দেয় যার ফলে তারা শুকিয়ে যায় বা ফেটে যেতে পারে ধূমপান রক্তে অক্সিজেনের পরিমাণও হ্রাস করে এবং এর ফলে পেশীতে কম পুষ্টি পৌঁছায় এই দুর্বল অসুস্থ পিঠ দুর্ঘটনাজনিত স্ট্রেন এবং পিঠে ব্যথা সৃষ্টিকারী টানগুলির জন্য বেশি ঝুঁকিপূর্ণ৯ হাঁটুর নিচে বালিশ দিয়ে ঘুমানউপুড় হয়ে বা চিৎ হয়ে ঘুমালে আপনার মেরুদণ্ডে চাপ পড়ে ঘুমের সময় আপনার পা সামান্য উঁচু করে রাখলে পিঠের এই চাপ থেকে মুক্তি পাওয়া যায় তাই হাঁটুর নিচে বালিশ দিয়ে আপনি আপনার পিঠের উপর চাপ অর্ধেক কমে ফেলতে পারেন এই গরমে ডায়রিয়ার প্রকোপ প্রচণ্ডভাবে বাড়ছে আর ডায়রিয়া মূলত পানিবাহিত রোগ তাই খাবার–সেটা কাঁচাই হোক আর রান্নাই হোক অসতর্ক থাকলে আপনিপানি বাহিত যেকোনো রোগেই আক্রান্ত হতে পারেন এই কারণে খাদ্য নিরাপত্তার একদম মৌলিক ব্যাপারগুলো সম্পর্কে জানা থাকাটা খুবই জরুরি আর এই গরমমৌসুমে নিজের এবং পরিবারের সুরক্ষার জন্য এগুলো মাথায় রেখেই রান্না ও খাওয়াদাওয়া করতে হবেরান্না বান্নার ক্ষেত্রে সতর্কতাকাঁচা যেকোনো কিছু খাওয়ার আগে অবশ্যই ভালো করে হাত ধুয়ে নিতে হবে হাত যতই পরিষ্কার দেখাক না কেন সাবান দিয়ে হাত কচলে পরিষ্কার পানি দিয়ে ধুয়ে নেওয়া আবশ্যকযেকোনো আমিষ (গোরু মুরগি বা মাছ) ভালোমতো সিদ্ধ করা যেমন গোরুর মাংস রান্না করতে হলে পাত্রের ভিতরের তাপমাত্রা কমপক্ষে ৭১০ সেলসিয়াসবা ১৬০০ ফারেনহাইট হতে হবে মুরগির মাংসের ক্ষেত্রে এটা ১৬৫০ ফারেনহাইট মাছ ১৪৫০ ফারেনহাইট রান্না করতে হবে ২০৩০ মিনিট ধরেযেকোনো কাঁচা মাংস হাত দিয়ে ধরার পর অন্য কিছু ধরার আগে অবশ্যই হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে ফেলতে হবে পাশাপাশি যেখানে রেখে মাংস কাটা হয়সেই স্থান এবং রান্নাঘরের বাসনকোসনও ধুয়ে ফেলতে হবে ভালোভাবেখাবার পরিবেশনের আগেও হাত ধুয়ে নিতে হবেরান্না খাবারের সাথে কাঁচা খাবার মেশানো যাবে নারান্নার সব বাসনকোসন তৈজসপত্র এবং রান্নার জায়গা (কাটিং বোর্ড বেসিন কাটাকাটির জায়গা চুলার আশপাশ ইত্যাদি) প্রতিবার ব্যবহারের আগেধুয়ে জীবাণুমুক্ত করে নিলে ভালো হবে পরিষ্কার করার জন্য পানি এবং ডিটারজেন্ট ব্যবহার করতে হবে তারপর গরম পানি ঢেলে দিয়ে ধুয়ে নিতে হবেআর খাবার কোথাও পড়ে গেলে জীবাণুমুক্তকরণ তরল দিয়ে মুছে নিতে হবে জায়গাটাকোনো রোগে আক্রান্ত হলে লক্ষণ থাকাকালীন এবং সুস্থ হওয়ার ৪৮ ঘণ্টা পর্যন্ত রান্না করা যাবে নাপানি পানের ক্ষেত্রে সতর্কতাযেখান থেকে পানি আনা হচ্ছে সেটা নিয়মিত পরীক্ষা করে দেখা উচিত যে তাতে কোনো জীবাণু জন্মাচ্ছে কি নাসাঁতার কাটার সময় সুইমিং পুল বা ঝরনা নদী দিঘি সমুদ্র এসব জায়গা থেকে পানি গিলে ফেলা যাবে নাদিঘি নদী ঝরনা বা অগভীর ডোবা থেকে অপরিশোধিত পানি খাওয়া যাবে নাকোথাও বেড়াতে গেলে না জেনেই কোনো কল থেকে পানি বা বরফ ব্যবহার করা যাবে না পানিকে বিশুদ্ধ করে তারপর পান করতে হবেরাস্তার পাশের পানিপুরি ভেল্পুরি চটপটি ফুচকা জাতীয় খাবারের সাথে যেই টক দেওয়া হয়–সেই টকের পানিতে ইকোলাই ব্যাকটেরিয়া থাকতে পারেযা ডায়রিয়ার অন্যতম প্রধান কারণ এ কারণে রাস্তার পাশের যেকোনো খাবার খাওয়ার সময়ই সতর্ক থাকা ভালো প্রয়োজনে এসব খাবার বর্জন করতে হবেরোগ প্রতিকারের চাইতে প্রতিরোধ অনেক গুণ উত্তম আর ডায়রিয়াসহ পানিবাহিত রোগগুলো শুধুমাত্র সামান্য সতর্কতা দিয়েই প্রতিরোধ করা সম্ভবনিজে এসব সতর্ক হওয়ার পাশাপাশি বাড়ির ছোটো বাচ্চাদেরকেও শিখিয়ে দিলে তারাও সহজেই সুস্থ থাকতে পারে পিঠে ব্যথার অনেক ধরণের উপসর্গ থাকতে পারে যার মধ্যে রয়েছে পিঠের নিচের অংশে একটা ভোতা বেদনাদায়ক অনুভুতি ছুরিকাঘাতের মত ব্যাথা যা পায়ের দিকেও ছড়িয়ে পড়ে সোজা হয়ে দাঁড়ানোর সময় ব্যাথা এবং দাঁড়াতে অক্ষমতা চলাচলে ব্যাঘাত ঘটাব্যাকপেইন যদি অতিরিক্ত কাজের চাপ বা ভুল ভঙ্গীতে শোয়া বা বসার কারণে হয় তবে তা সাধারণত দুই তিন দিনের ভেতরই সেরেও যায় তবে ৩ মাসের বেশি সময় ধরে থাকা পিঠের ব্যথা আমাদের জন্য উদ্বেগজনক ব্যাথার শুরু হওয়ার ৩ সপ্তাহের মধ্যে পিঠ ব্যাথার অবস্থা এবং তীব্রতায় যদি কোনো পরিবর্তন না আসলে দ্রুত ডাক্তারের পরামর্শ নেয়া উচিতএ ছাড়াও ব্যাকপেইনের সাথে সাথে নিচে দেয়া এই লক্ষণগুলি আছে কি না সেটাও খেয়াল রাখতে হবে ব্যাকপেইনের সাথে এই উপসর্গগুলি সাধারণত অন্য কোন জটিল রোগের কারণও হতে পারেমলমুত্র ত্যাগে নিয়ন্ত্রণ হারানোযেকোনো একটি বা উভয় পায়ে অসাড়তা দুর্বলতা অথবা শিরশিরে অনুভুতি তীব্র দীর্ঘস্থায়ী ব্যথা যা রাতে আরও খারাপ হয়ব্যাখ্যাতীত ওজন হ্রাসজ্বরপেটে দপদপে ব্যাথাআঘাত বা ট্রমার পরের পিঠ ব্যথাদীর্ঘস্থায়ী ব্যাকপেইন কিংবা ব্যাকপেইনের সাথে যদি এই উপসর্গগুলি থাকে তবে দ্রুতই ডাক্তারের শরণাপন্ন হতে হবে পিঠের ব্যথা চিকিত্সায় রয়েছে অনেক ঘরোয়া প্রতিকার যার মাঝে অনেকগুলোকে ঐতিহ্যবাহীও বলা যেতে পারে ১ তাপ এবং বরফ থেরাপি পিঠের ব্যথার অস্বস্তি কমাতে আইস প্যাক ব্যবহার করতে পারেন এছাড়াও স্বল্পমেয়াদীভাবে প্রদাহ কমিয়ে আনতে সাহায্য করতে পারে আইস প্যাক তবে মনে রাখবেন আপনার ত্বকে সরাসরি বরফ প্রয়োগ করবেন না এতে ত্বকের ক্ষতি হয় তাই একটি পাতলা তোয়ালে বা গজ দিয়ে মুড়িয়ে বরফ ব্যবহার করুন প্রদাহ কমে গেলে উষ্ণ তোয়ালে দিয়েও ব্যথা উপশম করতে পারেন তবে তাপ এবং ঠান্ডার মধ্যে কোনটি আপনার সাথে মানানসই সেটি বিবেচনা করুন২ ব্যায়াম পিঠের পেশীগুলিকে শক্তিশালী করার ব্যায়াম পিঠ ব্যাথা থেকে মুক্তি পাওয়ার সবচেয়ে উত্তম উপায় এর পাশাপাশি দৈনন্দিন চলাফেরা এবং কাজকর্মের অঙ্গভঙ্গিতে পরিবর্তন আনুন ভারি জিনিস সঠিক নিয়মে উঠান প্রয়োজনে ফিজিওথেরাপিস্ট এর সাহায্য নিন একজন ফিজিওথেরাপিস্ট আপনাকে পিঠের জন্য উপযোগী এবং বাড়িতে বসেই করতে পারার মতো ব্যায়াম শিখিয়ে দিতে পারেন তাছাড়া আপনার অঙ্গভঙ্গি ঠিক করতেও সাহায্য করতে পারবেন তিনি৩ ভেষজ তেল গবেষণায় দেখা গেছে ক্যাপসাইসিন দিয়ে তৈরি ভেষজ তেল বা মলম ব্যথা কমাতে সাহায্য করতে পারে ক্যাপসাইসিন হল মরিচের একটি উপাদান যা তাদের উষ্ণতা দেয় এটি আক্রান্ত এলাকার স্নায়ুগুলির সংবেদনশীলতা কমিয়ে আনে এবং ব্যথা কমিয়ে দিতে পারেপিঠের ব্যথা কমাতে এই ঘরোয়া সমাধানগুলি অত্যন্ত কার্যকর হতে পারে সেগুলি কীভাবে ব্যবহার করবেন সে সম্পর্কে বিস্তারিত জেনে বুঝে এরপরই প্রয়োগ করুন তবে ব্যাকপেইন বেশি হলে বা দীর্ঘস্থায়ী হলে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ নিন ডায়রিয়া বা অন্য যেকোনো কারণে পানিশূন্যতা প্রতিরোধে কার্যকর সমাধান হলো খাবার স্যালাইন খাওয়া ডায়রিয়ার কারণে শরীর থেকেযে অতিরিক্ত পানি বের হয়ে যায় সেই ক্ষতি পুষিয়ে দেওয়াই স্যালাইনের কাজকিন্তু স্যালাইন ভুল নিয়মে খেলে উপকার হবে না বরং এতে ক্ষতির সম্ভাবনাই বেশি তাই চলুন জেনে নেই ডায়রিয়ায় স্যালাইন ও অন্যান্য তরলখাবার খাওয়ানো নিয়ে কিছু বহুল প্রচলিত প্রশ্নের উত্তরপ্রশ্ন কীভাবে সঠিক নিয়মে স্যালাইন খেতে হবেউত্তর শরীরে পানি প্রতিস্থাপনের কাজটা তাড়াহুড়া করে করা যাবে না ধীরে ধীরে করতে হবে তাই স্যালাইন একটু একটু করে চুমুক দিয়ে খেতে হবেবয়স ২ বছরের কম হলে–বাচ্চাকে প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরে একটা বড়ো কাপের (২৫০ মিলি) অর্ধেক বা সোয়া পরিমাণ খাওয়াতে হবে চামচে হিসাব করলে ১০ থেকে ২০ চা চামচ২ থেকে ১০ বছর বয়সি বাচ্চা–প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরে বড়ো কাপের (২৫০ মিলি) পুরোটা অথবা কমপক্ষে অর্ধেক খাওয়াতে হবে১০ বছরের বেশি বয়স–প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরে কমপক্ষে বড়ো কাপের (২৫০ মিলি) পুরোটা বা ২ কাপ অর্থাৎ স্যালাইনের প্যাকেটের পুরোটা খেতে হবেপ্রশ্ন স্যালাইন খাওয়ানোর পরে বাচ্চা বমি করলেউত্তর ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর আবার স্যালাইন দিন সাধারণত বমি এমনিতেই থেমে যাবে একটু একটু করে খাওয়ান তাড়াহুড়ো করবেন নাবমি হলেও শরীর ঠিকই একটু না একটু পানি এবং লবণ শোষণ করে নেবেপ্রশ্ন ডায়রিয়া হলে কী শুধু কি স্যালাইনই খাওয়াবোউত্তর না সাথে তরল জাতীয় অন্যান্য খাবারও খাওয়াতে হবে যেমন স্যুপ বা জ্যুস ডাবের পানি ভাতের মাড়স্যালাইন খাওয়ানোর সময় বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ রাখবেন না বাচ্চা যদি ৬ মাসের বেশি বয়সি হয় তাহলে অর্ধ তরল বা শক্ত খাবারও দেওয়া উচিতপ্রশ্ন যদি পানিশূন্যতার কারণে রোগী অচেতন হয়ে পড়েউত্তর তাহলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবেতবে যদি কোনো কারণে ঐ মুহূর্তে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব না হয় বা অ্যাম্বুলেন্স আসার আগ পর্যন্ত ৫ মিনিট পরপর তার ঠোঁটে একটু একটু করেস্যালাইন দিতে থাকতে হবে যতক্ষণ না প্রস্রাবের পরিমাণ ঠিক হয়প্রশ্ন কতদিন পর্যন্ত স্যালাইন দিয়ে যেতে হবেউত্তর ডায়রিয়া যতদিন পুরোপুরি না সারে তার আগপর্যন্ত স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার চালিয়েই অনেক বেশি পরিমাণে যেতে হবেতবে সাধারণত ২/৩ দিনের বেশি ডায়রিয়া থাকে নাপ্রশ্ন ডায়রিয়ায় জিংক সাপ্লিমেন্ট খাওয়ানো কি ভালোউত্তর ডায়রিয়ার ব্যাপ্তি কমিয়ে আনার জন্য জিংক চমৎকার কাজ করে তাই এখন স্যালাইনের পাশাপাশি জিংকও ডায়রিয়ার জরুরি পথ্য তবে কোন বয়সি রোগী কতটা জিংক গ্রহণ করবেন সেটার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেস্যালাইন জীবন রক্ষাকারী হিসাবে যেমন কাজ করে তেমনি এটি সঠিক নিয়মে না খাওয়ালে জটিলতা আরও বাড়তে পারে তাই এই ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত সবার শরীরে পানি প্রতিস্থাপনের কাজটা তাড়াহুড়া করে করা যাবে না ধীরে ধীরে করতে হবে তাই স্যালাইন একটু একটু করে চুমুক দিয়ে খেতে হবেবয়স ২ বছরের কম হলে–বাচ্চাকে প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরে একটা বড়ো কাপের (২৫০ মিলি) অর্ধেক বা সোয়া পরিমাণ খাওয়াতে হবে চামচে হিসাব করলে ১০ থেকে ২০ চা চামচ২ থেকে ১০ বছর বয়সি বাচ্চা–প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরে বড়ো কাপের (২৫০ মিলি) পুরোটা অথবা কমপক্ষে অর্ধেক খাওয়াতে হবে১০ বছরের বেশি বয়স–প্রতিবার পাতলা পায়খানার পরে কমপক্ষে বড়ো কাপের (২৫০ মিলি) পুরোটা বা ২ কাপ অর্থাৎ স্যালাইনের প্যাকেটের পুরোটা খেতে হবে ১০ মিনিট অপেক্ষা করুন তারপর আবার স্যালাইন দিন সাধারণত বমি এমনিতেই থেমে যাবে একটু একটু করে খাওয়ান তাড়াহুড়ো করবেন নাবমি হলেও শরীর ঠিকই একটু না একটু পানি এবং লবণ শোষণ করে নেবে না সাথে তরল জাতীয় অন্যান্য খাবারও খাওয়াতে হবে যেমন স্যুপ বা জ্যুস ডাবের পানি ভাতের মাড়স্যালাইন খাওয়ানোর সময় বুকের দুধ খাওয়ানো বন্ধ রাখবেন না বাচ্চা যদি ৬ মাসের বেশি বয়সি হয় তাহলে অর্ধ তরল বা শক্ত খাবারও দেওয়া উচিত তাহলে যত দ্রুত সম্ভব হাসপাতালে নিতে হবেতবে যদি কোনো কারণে ঐ মুহূর্তে হাসপাতালে নেওয়া সম্ভব না হয় বা অ্যাম্বুলেন্স আসার আগ পর্যন্ত ৫ মিনিট পরপর তার ঠোঁটে একটু একটু করেস্যালাইন দিতে থাকতে হবে যতক্ষণ না প্রস্রাবের পরিমাণ ঠিক হয় ডায়রিয়া যতদিন পুরোপুরি না সারে তার আগপর্যন্ত স্যালাইন ও অন্যান্য তরল খাবার চালিয়েই অনেক বেশি পরিমাণে যেতে হবেতবে সাধারণত ২/৩ দিনের বেশি ডায়রিয়া থাকে না ডায়রিয়ার ব্যাপ্তি কমিয়ে আনার জন্য জিংক চমৎকার কাজ করে তাই এখন স্যালাইনের পাশাপাশি জিংকও ডায়রিয়ার জরুরি পথ্য তবে কোন বয়সি রোগী কতটা জিংক গ্রহণ করবেন সেটার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবেস্যালাইন জীবন রক্ষাকারী হিসাবে যেমন কাজ করে তেমনি এটি সঠিক নিয়মে না খাওয়ালে জটিলতা আরও বাড়তে পারে তাই এই ব্যাপারে সতর্ক থাকা উচিত সবার কী প্রশ্নটি দেখে ভড়কে গেলেন ভড়কে যাওয়াটাই স্বাভাবিক কিন্তু বাস্তবতা হচ্ছে আমাদের অনেকেরই মেরুদণ্ড বিভিন্ন কারণে বাঁকা হয়ে যায় এবং এটি বিভিন্ন ধরনের ছোটো বড়ো শারীরিক সমস্যা তৈরি করেআমাদের মেরুদণ্ড হলো হাড়ের কলাম যা কশেরুকা নিয়ে গঠিত এটি আপনার খুলির নিচ থেকে আপনার কোমর পর্যন্ত বিস্তৃত এটি আপনার ওপরের শরীরের ভার বহন করে আমাদের দৈনন্দিন কার্যক্রম ও চলাফেরায় অপরিহার্য অংশ এই মেরুদণ্ডআপনার মেরুদণ্ডের হাড়গুলো সঠিকভাবে সারিবদ্ধ থাকলে একটি আর্চ বা ধনুকের মতো বাঁকানো থাকবে যদি মেরুদণ্ড স্বাভাবিক থাকে তবে আপনার মাথা থেকে শুরু করে কাঁধ পিঠ থেকে আপনার পশ্চাদ্দেশ হাঁটু এবং পা একটি অপেক্ষাকৃত সরল রেখা বজায় রাখবেআপনার মেরুদণ্ড যদি সঠিকভাবে সারিবদ্ধ না থেকে তার স্বাভাবিক ধনুক আকৃতি হারিয়ে ফেলে বা যদি কোনো মিসঅ্যালাইনমেন্ট হয় তাহলে আপনার চলাফেরা ও গতির পরিধিকে ব্যাহত করতে পারে ব্যথার সৃষ্টি করতে পারে এবং আরো গুরুতর সমস্যা তৈরি করতে পারেআপনার মেরুদণ্ডের মিসঅ্যালাইনমেন্ট বা কশেরুকার সাজানো অবস্থান নষ্ট হলে যে লক্ষণগুলোর দেখা দেবে মধ্যে রয়েছেদীর্ঘস্থায়ী মাথাব্যথাকোমর ব্যথাঘাড় ব্যথাহাঁটুর ব্যথাপশ্চাদ্দেশের ব্যথাঘনঘন অসুস্থতাঅত্যধিক ক্লান্তিহাত বা পায়ে অসাড়তা বা ঝাঁকুনিহাঁটায় অস্বাভাবিকতা যার কারণে অনেক সময় একটি জুতা খুলেও যেতে পারেব্যায়াম এবং জীবনযাত্রায় পরিবর্তন যেমন চলাফেরায় কাজকর্মে সঠিক অঙ্গভঙ্গি আমাদের মেরুদণ্ডকে সুস্থ রাখতে পারেতবে এগুলো পালন করা সত্ত্বেও আপনি যদি বারবার পিঠে ব্যথা হাঁটার সমস্যা অনুভব করেন তবে ডাক্তারের পরামর্শ নিন এর পাশাপাশি যদি মূত্রাশয়ের সমস্যা অনুভব করেন যেমন মল বা মুত্র ত্যাগে নিয়ন্ত্রণ হারানো অথবা পায়ে অনুভূতি হারিয়ে ফেলেন তবে অবিলম্বে একজন ডাক্তারের সাথে যোগাযোগ করুন বাত বা রিউমাটয়েড আর্থ্রাইটিস (RA) হলো একটি অটোইমিউন ব্যাধি মানে এতে আপনার রোগ প্রতিরোধ সিস্টেম বা ইমিউন সিস্টেম আপনার জয়েন্টগুলোকে আক্রমণ করে এর ফলে জয়েন্টে বা গিরায় গিরায় ব্যথা লালভাব ফুলে যাওয়া এবং প্রদাহ হয়আমাদের অনেকেরই এই বাতের ব্যথা রয়েছে তবে রোগটি সাধারণ হলেও পর্যাপ্ত জ্ঞান নেই আমাদের মধ্যে চলুন জেনে আসা যাক বাত নিয়ে ১০টি বিষয়–১ প্রাথমিক পর্যায়ে বাত একটি অদৃশ্য রোগ তাই রোগীর নিজেরই বাতের সমস্যার শারীরিক লক্ষণগুলো সম্পর্কে ধারণা থাকা প্রয়োজন২ এক এক বয়সি রোগীদের মধ্যে বাতের প্রভাব ভিন্ন হয়৩ বাতের ব্যথা উপশমে ব্যায়াম একটি কার্যকরী ওষুধ ৪ বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে বিশ্রাম খুব গুরুত্বপূর্ণ৫ বাতের জন্য মানসিক চাপ কমানো জরুরি৬ ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখলে বাত নিয়ন্ত্রণ করা অনেকাংশে সম্ভব৭ বাত ব্যথার সাথে অবসাদ (ডিপ্রেশন) বা মানসিক ক্লান্তি আসাটা খুবই সাধারণ ৮ বাতের রোগীদের হার্ট অ্যাটাকের সম্ভাবনা অন্যদের থেকে বেশি৯ বাতের রোগীদের ধীরে ধীরে ফিব্রোমায়ালজিয়া কিংবা লুপাসের মতো রোগও হতে পারে১০ বাত থেকে পুরোপুরি সুস্থ হওয়া সম্ভব যদি প্রারম্ভিক পর্যায়ে তা শনাক্ত এবং চিকিৎসা শুরু করা যায়বাতের ব্যথা কমে বাড়ে এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের একটা বড়ো অংশ কেড়ে নেয় তবে লক্ষণগুলো নিয়ন্ত্রএন করতে চাইলে ডাক্তারের পরামর্শ মতো চলাটা খুব জরুরিআপনার জয়েন্টগুলোতে ব্যথা এবং শক্ত হয়ে যাওয়া দৃশ্যমান লালভাব বা বিবর্ণতা আপনার নিয়মিত কাজের পরে অতিরিক্ত ক্লান্তি বা অবসাদ আর সর্বোপরি আপনার বাতের ব্যথা যদি আপনার দৈনন্দিন কাজে ব্যাঘাত ঘটায় তবে ডাক্তারের সাথে আলাপ করুনজীবনধারা পরিবর্তন এবং ওষুধ নেওয়ার পরও যদি আপনার লক্ষণগুলোতে উন্নতি না হয় তবে অবশ্যই ডাক্তারের পরামর্শ জরুরি বাতের ব্যথা আমাদের দেশে সচরাচর দেখা যায় বাত পুরোপুরি নির্মূল করা না গেলেও চিকিৎসকের পরামর্শ মতো চললে বেশ ভালোভাবে নিয়ন্ত্রণ করা যায় এর মাঝে একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো আপনার খাদ্যাভ্যাস বা ডায়েটখাদ্যাভাসের প্রতি যত্নশীল হওয়া আপনার বাতকে নিয়ন্ত্রণে রাখতে মুখ্য ভূমিকা পালন করবে আপনার উপসর্গগুলো কমাতে ডাক্তার কিছু বিশেষ খাদ্যাভ্যাস সুপারিশ করতে পারে যা মেনে চললে আপনার ব্যথা অনেকাংশে কমতে পারে এই খাদ্যাভ্যাসে সাধারণত থাকে১ ওমেগা3 ফ্যাটি অ্যাসিড সম্পন্ন খাবারওমেগা3 ফ্যাটি অ্যাসিড সম্পন্ন খাবারগুলোর মধ্যে রয়েছে মাছের তেল সামুদ্রিক মাছ চিয়া বীজ শণ বীজ আখরোট২ অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারভিটামিন এ সি এবং ই এবং সেলেনিয়াম প্রদাহ কমাতেও সাহায্য করতে পারে অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট সমৃদ্ধ খাবারের মধ্যে রয়েছে কালো চকলেট পালং শাক মটরশুটি ইত্যাদি৩ প্রচুর ফাইবার বা আঁশজাতীয় খাবারপ্রচুর আঁশ বা ফাইবার খাওয়াও গুরুত্বপূর্ণ শস্য জাতীয় খাবার তাজা শাকসবজি এবং তাজা ফল আঁশের খুব ভালো উৎস৪ ফ্ল্যাভোনয়েডযুক্ত খাবারসয়া গ্রিন টি ব্রকলি আঙ্গুরের মতো ফ্ল্যাভোনয়েডযুক্ত খাবারগুলো শরীরের প্রদাহ প্রতিরোধে সাহায্য করতে পারেসুস্থ থাকার জন্য কী খাচ্ছেন আর কী খাচ্ছেন না–সেটা খুবই গুরুত্বপূর্ণ যে খাবারে আপনার ব্যথা শুরু হয়ে যায় সেগুলো এড়িয়ে চলতে হবে পাশাপাশি প্রক্রিয়াজাত কার্বোহাইড্রেট এবং স্যাচুরেটেড বা ট্রান্স ফ্যাট যা বাইরের ভাজাপোড়া খাবারে ফাস্টফুড এবং জুস চিপ্স বিস্কুটের মতো প্রক্রিয়াজাত খাবারে থাকে–এমন খাবার পরিহার করতে হবে বাতের ব্যথা নিয়েই যাদের নিত্য বসবাস তাদের জন্য লেখাটি খুব কাজের হতে পারে যারা দীর্ঘদিন বাতের ব্যথায় ভুগছেন–তারা অনেকেই বাতের ব্যথার উপশমের নানা উপায় খোঁজেন এসব উপশমের উপায়গুলো অনেক সময় অপচিকিৎসা বা ভুল চিকিৎসাও হয়ে থাকেবাতের ব্যথা উপশমে মূলত কাজে আসে বাতের ওষুধ এবং আমাদের জীবনযাত্রার কিছু বাজে অভ্যাস পরিবর্তন এই রোগের সরাসরি কোনো চিকিৎসা নেই তাই শুধুমাত্র ব্যথার ওষুধের ওপর নির্ভরশীল না হয়ে বরং মনোযোগ দিতে হবে আমাদের লাইফস্টাইলে বাতের ব্যথা নিয়ন্ত্রণে রাখার কিছু ঘরোয়া সমাধান নিয়ে এবার আলোচনা করা যাক১ ব্যায়ামহালকা ব্যায়াম আপনার শরীরের জয়েন্টগুলোর উন্নতি করতে পারে এছাড়াও ব্যায়ামের মাধ্যমে পেশি শক্তিশালী হয় ফলে শরীরের ওজন পেশিগুলো বহন করে আপনার গিরার ওপর থেকে কিছু চাপ কমাতে পারে২ পর্যাপ্ত বিশ্রামবাতের ব্যথা শুরু হলে আপনার স্বাভাবিকের তুলনায় বেশি বিশ্রামের প্রয়োজন হতে পারে পর্যাপ্ত ঘুম আপনার ব্যথার পাশাপাশি ক্লান্তি কমাতে সাহায্য করবে৩ ঠান্ডা কিংবা গরম ছ্যাঁক দেওয়াআইস প্যাক দিয়ে ঠান্ডা চাপ দিলে প্রদাহ এবং ব্যথা কমতে সাহায্য করতে পারে ব্যথার কারণে পেশিতে যদি খিঁচুনি হয় তবে ঠান্ডা চাপ দেওয়া কার্যকর অন্যদিকে হালকা গরম পানিতে গোসল বা ব্যথাস্থানে গরম ছ্যাঁক দিলে ব্যথার সাময়িক উপশম পাওয়া যায় গরম ছেঁক দেওয়া–হাত পায়ের গিরাগুলো শক্ত হয়ে যাওয়া কমাতেও সাহায্য করতে পারে৪ সহায়ক যন্ত্রপাতি ব্যবহারস্প্লিন্ট এবং ব্রেসের মতো কিছু ডিভাইস আপনার জয়েন্টগুলোকে বিশ্রামে রাখতে পারে ফলে এগুলোর সাহায্যে বাতের ব্যথাও কমতে পারে তবে এগুলো একটানা পরে থাকলে ফ্রোজেন জয়েন্ট হতে পারে তাই এগুলো ব্যবহারের মাঝে বিরতি নেওয়া গুরুত্বপূর্ণব্যথা অবস্থায় হাঁটাচলা বা কাজ করার জন্য প্রয়োজনে হাতের লাঠি বা ক্র্যাচ ব্যবহার করতে পারেন এতে ব্যথার স্থানে চাপ কম পড়বেআমাদের জীবনযাত্রার কিছু অভ্যাস পালটালেই বাতের ব্যথা অনেকাংশে নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব এছাড়াও প্রয়োজনে বাতের ব্যথার জন্য ডাক্তারের পরামর্শ নিন সুস্থভাবে দীর্ঘদিন বেঁচে থাকতে আমরা সবাই চাই সুস্থভাবে বেঁচে থাকতে প্রয়োজন সুস্থ জীবনধারা কিছু কিছু কাজ আছে যেগুলোকে নিয়মিত অভ্যাসে পরিণত করে ফেলতে পারলে সুস্থভাবে বেঁচে থাকার সম্ভাবনা অনেক বেড়ে যায় জেনে নিন সেই কাজগুলো কী কী–শরীরচর্চাগবেষণা বলছে দৈনিক মাত্র ১৫ মিনিট ব্যায়াম তিন বছর পর্যন্ত আয়ু বাড়াতে পারে এর বেশি সময় ব্যায়াম আরো সুফল দেবে আপনাকে চেষ্টা করবেন সপ্তাহে অন্তত ১৫০ মিনিট ব্যায়াম করার তবে শরীরচর্চার সময় খেয়াল রাখতে হবে যেন তা ঘাম ঝরানোর মতো হয়ধূমপান করবেন নাধূমপানের অভ্যাস জীবন থেকে ১০ বছর পর্যন্ত কেড়ে নিতে পারে বাড়াতে পারে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি ৩৫ বছর বয়সে ধূমপান ছাড়লে ৮৫ বছর বেশি বাঁচার সম্ভাবনা থাকে এমনকি ৬০ বছর বয়সেও কেউ ধূমপান ছাড়লে আয়ুতে ৩৭ বছর যোগ হতে পারে তাই ধূমপানের অভ্যাস ছাড়ার সবচেয়ে ভাল সময় এই মুহূর্তেইনিজের সুখকে প্রাধান্য দিনহাসিখুশি ও প্রসন্ন থাকা দীর্ঘায়ু লাভের রহস্য হতে পারে ৩৫টি জরিপের ফলাফল পর্যালোচনা করে দেখা যায় সুখী ব্যক্তিদের জীবন ১৮ দীর্ঘায়িত হয় তাই নিজের যত্ন নিন এবং হাসিখুশি থাকুনমানসিক চাপ এড়ানোর চেষ্টা করুনদীর্ঘসময় মানসিক চাপ ও উদ্‌বেগ আয়ু কমিয়ে আনতে পারে নারীদের ক্ষেত্রে মানসিক চাপ হৃদরোগ স্ট্রোক ফুসফুস ক্যান্সারের ঝুঁকি দ্বিগুণ করে এবং পুরুষদের ক্ষেত্রে অকালমৃত্যুর ঝুঁকি ৩ গুণ বাড়ায়জীবনের প্রতি ইতিবাচক মনোভাব রাখুন এবং প্রাণ খুলে হাসার চেষ্টা করুন ইতিবাচক মনোভাব মানসিক চাপের কুফলগুলো কমাতে ভূমিকা রাখতে পারেআপনজনদের কাছে রাখুনআপন মানুষদের সাথে সম্পর্ক ভালো রাখুন সুস্থ সামাজিক জীবন মানসিক চাপ কমিয়ে ও রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দীর্ঘায়ু পেতে সাহায্য করে আপনজনদের সাহায্য করা এবং সঙ্গ দেওয়া নিজের মানসিক স্বাস্থ্যের জন্য ভালোকর্তব্যবোধএকটি গবেষণায় ১৫০০ বালকবালিকাদের বার্ধক্য পর্যন্ত পর্যবেক্ষণ করে দেখা যায় যে নিয়মানুবর্তী ও কর্মঠ ব্যাক্তিরা ১১ বেশি আয়ুস্কাল লাভ করে শৃঙ্খলাবোধ সম্পন্ন ব্যক্তিদের উচ্চ রক্তচাপ মানসিক ব্যাধি ও ডায়াবেটিসের ঝুঁকি কম থাকে বলে জানা যায়ঘুমনিয়মিত ৬ থেকে ৮ ঘণ্টা ঘুম দীর্ঘ জীবন লাভ করতে সহায়ক হতে পারে অপরদিকে ৫৭ ঘণ্টার কম অথবা ৮৯ ঘণ্টার বেশি ঘুম স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকরআমরা নশ্বর এটাই সত্য তবে এই পৃথিবীতে অনেকদিন প্রিয়জনদের সাথে সুস্থ সুন্দরভাবে বেঁচে থাকতে কে না চায় এই সাতটি অভ্যাস মেনে চলে আসুন সুস্থ সুন্দর ভাবে বাঁচি রক্তস্রাব মাথাব্যথা ও চোখে ঝাপসা দেখা খিঁচুনি ভীষণ জ্বর বিলম্বিত প্রসব বা প্রসবের সময় বাচ্চার মাথা ছাড়া অন্য কোন অঙ্গ প্রথমে বের হওয়া যদি গর্ভবতী মা নিজেকে শারীরিকভাবে সুস্থ মনে করেন তবে এই সময়ে স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে না গিয়ে প্রয়োজনে ফোনের মাধ্যমে স্বাস্থ্যসেবা নিন স্বাস্থ্য কেন্দ্রগর্ভাবস্থায় খুব জরুরী হলেই শুধুমাত্র স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রে যান সেক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় সাবধানতা অবলম্বন করুন যেমন পরিবহনকে নিরাপদ করা সব সময় মাস্ক ব্যবহার করা যথাযথ নিয়ম মেনে হাত ধোয়া গর্ভবতী মাকে নিরাপদ রাখতে প্রসবের আগে প্রসবের সময় এবং প্রসব পরবর্তী সময়ে করোনাভাইরাস প্রতিরোধের সকল নিয়মকানুন মেনে চলুন স্বামীরা সংসারের কাজগুলো করার বিষয়ে সচেতন হোন এবং গর্ভবতী মাকে আরো বেশি বিশ্রামের সুযোগ করে দিন নিরাপদ প্রসবের জন্য স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্রের সাথে অথবা স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে আগে থেকেই যোগাযোগ করুন এবং কিছু সঞ্চয় রক্তদাতা যানবাহন ঠিক করে রাখুন পরিবার কল্যাণ সহকারীর (FWA) সাথে• স্যাটেলাইট ক্লিনিকে কমিউনিটি ক্লিনিকে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্রে (UH & FWC)উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে• মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্রে (MCWC) জেলা সদর ও মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে • দুর্যোগকালীন সময়ে স্বামীস্ত্রী মিলে আলোচনা করে পরিবার পরিকল্পনার কোন পদ্ধতিটি গ্রহণ করবেন সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিন এবং নিজেদেরকে ঝুঁকিমুক্ত রাখুন•যেকোনো পদ্ধতির সঠিক ব্যবহারবিধি সুবিধা/অসুবিধা বিষয়ক তথ্য পেতে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যোগাযোগ করুন•পরিবার পরিকল্পনা পদ্ধতি গ্রহণের ক্ষেত্রে স্বামী হিসেবে আপনার স্ত্রীকে সহায়তা করুন•পদ্ধতি গ্রহণকালীন সময়ে কোনো সমস্যা দেখা দিলে নিকটবর্তী স্বাস্থ্যসেবা কেন্দ্র অথবা স্বাস্থ্যকর্মীর সঙ্গে যোগাযোগ করুন পরিবার কল্যাণ সহকারী বা স্বাস্থ্য সহকারী কমিউনিটি ক্লিনিক ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্ৰ জেলা সদর হাসপাতাল মডেল পরিবার পরিকল্পনা ক্লিনিক এনজিও/ বেসরকারী ক্লিনিক আলাপন হেল্পলাইন ০৯৬১২ ৬০০৬০০ যেকোনো দুর্যোগকালীন সময়ে দায়িত্ববান ও সংবেদনশীল মাবাবা হই কিশোরীদের সুরক্ষার বিষয়ে সচেতন থাকি ও বাল্যবিয়েকে 'না' বলি ত্রাণ বা অন্য কোনো জরুরী সেবা নেয়ার সময় আপনাকে যদি কেউ কোনো কুপ্রস্তাব দেয় বা গায়ে অযাচিতভাবে স্পর্শ করে তবে সে যেই হোক না কেনো দৃঢ়ভাবে 'না' বলুন বাবামাকে বা অভিভাবককে না জানিয়ে কারো কাছ থেকে কোনো উপহার গ্রহণ করা থেকে বিরত থাকুন নির্জন এবং অন্ধকার জায়গাগুলো থেকে নিরাপদ দূরত্বে থাকুন প্রয়োজনে টর্চ ব্যবহার করুন এবং বাঁশি বাজান শরীরের বিভিন্ন স্পর্শকাতর অংশগুলো সম্পর্কে সচেতন থাকুন ঘরে বা বাহিরে যেকোনো জায়গায় নির্যাতনের শিকার হওয়ার সম্ভাবনা দেখা দিলে জোরে কথা বলুন প্রয়োজনে চিৎকার দিন পারিবারিক নির্যাতনের ক্ষেত্রে বিশ্বস্ত কারো সহায়তা নিন আপনার অনুমতি না নিয়ে কাউকে ছবি তুলতে দিবেন না ফোনে কেউ বাজে উক্তি করলে বা এস এম এস পাঠালে তাকে এড়িয়ে চলুন ৯৯৯ অথবা ১০৯ কল করুন হটলাইন ১০৯৮ ০৯৬১২৬০০৬০০ বাবামা অথবা পরিবারের বড় সদস্যদের সাথেখোলামেলা আলোচনা করা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা সেবাদানকারীর সাথে সরাসরি যোগাযোগ করা অপুষ্টিতে ভুগলে যে কোনো সংক্রমণের সম্ভাবনা বেড়ে যায় মাসিকের সময় অপরিষ্কার কাপড়ব্যবহার করলে বা পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন না থাকলে প্রজননতন্ত্রের সংক্রমণ হতে পারে বয়ঃসন্ধিকালে শরীর দ্রুত বাড়ে সেজন্য অতিরিক্ত শক্তি ও পুষ্টির প্রয়োজন হয় তাই এসময়ে শরীর গঠন ও ক্ষয়পূরণের পাশাপাশি মানসিক বিকাশ এবং রোগ প্রতিরোধের জন্য সুষম ও পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে বিশেষ করে আমিষ ভিটামিন খনিজ ও লবণসমৃদ্ধ খাবার খেতে হবেকৈশোরে ছেলেমেয়েরা পড়াশুনার পাশাপাশি খেলাধুলাও করে থাকে তাই শরীরে প্রয়োজনীয় শক্তি যোগানের জন্যে বয়স ও দৈনন্দিন কাজের পরিমাণ অনুযায়ী ক্যালরি কম বা বেশি গ্রহণ করতে হবে অর্থাৎ যার বয়স কম বা কাজ কম করে সে কম ক্যালরি ও যার বয়স বেশি এবং বেশি কাজ করে সে বেশি ক্যালরি গ্রহণ করবে শর্করা জাতীয় খাবার ভাত আটা বা ময়দার রুটি পাউরুটি আলু মিষ্টিআলু মুড়ি চিড়া খৈ চিনি মধু প্রভৃতি চর্বি জাতীয় খাবার তেল মাখন ঘি মাছমাংসের চর্বি প্রভৃতি আমিষ জাতীয় খাবার ডিম মাছ মাংস কলিজা ছোটমাছ দুধ সয়াবিন ও অন্যান্য ডাল বাদাম সিমের বিচি প্রভৃতিভিটামিন ও খনিজসমৃদ্ধ খাবার (শাক সবজি ও ফল জাতীয় খাবার) কচুশাক পুঁইশাক কলমিশাক পালংশাক পাকা আম পাকা তাল পাকা পেঁপে পাকা কাঁঠাল আনারস পেয়ারা আমলকি আমড়া কলা লেবু গাজর মিষ্টিকুমড়া শিম ছোটমাছ দুধ ডিম কলিজা প্রভৃতি মানসিক বিকাশ ও শারীরিক বৃদ্ধির আগে অর্থাৎ অপরিণত বয়সে বিয়ে করলে মানসিক চাপ ও পরবর্তীতে সন্তানধারণের জন্য শারীরিক ধকলের মোকাবিলা করতে হয় যা কিশোরকিশোরীর মানসিক ও শারীরিক অসুস্থতার কারণ হয়ে থাকে■ বাল্যবিয়ে হলে কিশোরকিশোরীরা পড়ালেখা চালিয়ে যেতে পারে না তাই ভবিষ্যতে নিজের পায়ে দাঁড়াতে পারে না■ বাল্যবিয়ের কারণে কিশোরীরা অল্প বয়সে সন্তানধারণ করে যার ফলে মেয়েরা প্রসবকালীন জটিলতাসহ দীর্ঘমেয়াদী বিভিন্ন রোগে (জরায়ু বের হয়ে আসা ফিস্টুলা প্রস্রাব ঝরা ইত্যাদি) ভোগে এমনকি অকাল মৃত্যুর শিকার হয়ে থাকে■ অপরিণত বয়সে বিয়ে হলে মা ও শিশুর মৃত্যুঝুঁকি বেড়ে যায় ■ কিশোরী অবস্থায় শারীরিক এবং মানসিক পরিপক্বতা না থাকায় নিজের পরিবারের ও সন্তানের সঠিক যত্ন নিতে পারে না দেশের আইন অনুযায়ী বিয়ের জন্য মেয়েদের বয়স কমপক্ষে ১৮ বছর এবং ছেলেদের ২১ বছর হতে হবে এর আগে বিয়ে হলে তাকে বাল্যবিয়ে বলে কৈশোরে হরমোনের প্রভাবে ছেলেদের প্রজনন অঙ্গে প্রতিনিয়ত বীর্য তৈরি হয় এবং তা জমা হতে থাকে এই বীর্য জমা হতে হতে স্বাভাবিকভাবেই ঘুমের মধ্যে উত্তেজনাকর স্বপ্ন দেখলে লিঙ্গ দিয়ে তা বের হয়ে আসে একে স্বপ্নবাস বা স্বপ্নদোষ বলে স্বপ্নবাস কৈশোরের একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া স্বপ্নবাস হলে দুশ্চিন্তার কিছু নেই শরীর ভালোভাবে ধুয়ে পরিষ্কার করে নিতে হবে মাদক থেকে দূরে থাকি জীবনটাকে সুস্থ রাখিশখ করেও কখনো মাদক সেবন নয়সন্তানের কথা শুনবো ওদের নিরাপদে রাখবো ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্র •উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স • মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্ৰ • জেলা হাসপাতাল • স্কুল হেলথ ক্লিনিক • নির্দিষ্ট এনজিও ক্লিনিক নির্যাতনের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াই একসাথেকিশোরকিশোরীদের নির্যাতনের বিরুদ্ধে কথা বলি তাদের নিরাপদ রাখি কৈশোরকালীন স্বাস্থ্য বিষয়ক তথ্য সমস্যার সমাধান ও পরামর্শ পেতে ইউনিয়ন স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ কেন্দ্ৰউপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স মা ও শিশু কল্যাণ কেন্দ্ৰ জেলা হাসপাতাল স্কুল হেলথ ক্লিনিক নির্দিষ্ট এনজিও ক্লিনিক কৈশোরকালীন সময়ে কিশোরকিশোরীদের মাঝে বিভিন্ন ধরণের পরিবর্তন লক্ষ্য করা যায় পরিবার বন্ধু এবং সমবয়সীদের সাথে যোগাযোগের ক্ষেত্রেও নানা ধরণের ভিন্নতা প্রকাশ পায় কারণ প্রত্যেক কিশোর কিশোরীর মনোসামাজিক বিকাশ ভিন্ন এক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হিসেবে জিনগত বৈশিষ্ট্য মস্তিষ্কের বিকাশ অভিজ্ঞতা ছাড়াও চারপাশের পরিবেশ (পরিবার বন্ধু সমাজ কৃষ্টি) ইত্যাদিও বিশেষভাবে প্রভাব বিস্তার করে মনোসামাজিক পরিবর্তনের মাধ্যমে কিশোরকিশোরীদের মাঝে আত্মনির্ভরশীলতা এবং পরিণত বয়সের বৈশিষ্ট্যগুলো ধীরে ধীরে প্রকাশ পায় ব্যক্তিগত পরিচয় অনুসন্ধান করাঅধিক স্বাধীনচেতা মনোভাবঅধিক দায়িত্ব অন্বেষণ করাঝুঁকিগ্রহণমূলক আচরণসম্পর্কজনিত বিষয় পুষ্টি হলো একটি প্রক্রিয়া এ প্রক্রিয়াতে খাদ্যবস্তু খাওয়ার পরে পরিপাক হয় এবং জটিল খাদ্য উপাদানগুলো ভেঙ্গে সরল উপাদানে পরিণত হয় মানবদেহ এসব সরল উপাদান শোষণ করে নেয় এসব খাদ্য উপাদান মানবদেহের শক্তি ও যথাযথ বৃদ্ধি নিশ্চিত করে মেধা ও বুদ্ধি বাড়ায় রোগ প্রতিরোধ করে রোগব্যাধি থেকে তাড়াতাড়ি সুস্থ হতে সাহায্য করে এবং সর্বোপরি কর্মক্ষম করে যেসব খাদ্য খেলে শরীরে তাপ ও শক্তি উৎপাদিত হয় দেহের গঠন ও বৃদ্ধি হয় শরীর সবল কর্মক্ষম থাকে তাকে পুষ্টিকর খাদ্য বলে খাদ্য ও পুষ্টি একে অপরের সাথে জড়িত প্রতিটি খাদ্য অবশ্যই পুষ্টিকর ও নিরাপদ হতে হবে নিয়মিত পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ করলে শরীর ও মন ভালো থাকে মনে প্রফুল্লতা আসে এবং পড়াশোনা ও কাজে মনোযোগ বাড়ে মনে রাখতে হবে পুষ্টিকর খাদ্য গ্রহণ না করলে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায় এবং শরীরে বিভিন্ন ধরনের রোগ হয় বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) সংজ্ঞা অনুযায়ী ১০১৯ বছর বয়স সীমাকে কৈশোরকাল (adolescence) বলে এ সময় ছেলেমেয়ে উভয়েরই স্বাভাবিক শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয় দ্রুত ওজন ও উচ্চতার বৃদ্ধি এবং বুদ্ধির বিকাশ ঘটে তাই কিশোরকিশোরীদের সঠিক বৃদ্ধির জন্য এসময় পরিমাণমতো পুষ্টিকর ও সুষম খাবার গ্রহণ করা প্রয়োজন সঠিক পুষ্টি নিয়ে বেড়ে উঠলে কিশোরকিশোরীদের মেধা ও বুদ্ধির বিকাশ হয় লেখাপড়ায় মনোযোগ ভালো ফলাফল এবং কাজ করার সক্ষমতা বৃদ্ধি পায় মানবদেহকে সুস্থসবল রাখার জন্য খাদ্য অপরিহার্য খাদ্য বলতে সেই সকল জৈব উপাদানকে বোঝায় যেগুলো মানবদেহ গঠনে ভূমিকা রাখে ক্ষয়পূরণ করে শক্তি বৃদ্ধিসহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি করে মানুষ খাদ্য থেকে পুষ্টি গ্রহণ করে সুষম খাবার যেমন শর্করাজাতীয় খাবার (ভাত রুটি মুড়ি চিনি গুড় মধু আলু চিড়া ইত্যাদি) আমিষজাতীয় খাবার (ডিম দুধ মাছ মাংস ডাল বাদাম বিচি ইত্যাদি) আয়রনসমৃদ্ধ খাবার (মাংস কলিজা এবং গাঢ় সবুজ শাকসবজি) ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবার (কলিজা পাকা পেঁপে আম গাজর মিষ্টি কুমড়া ছোট মাছ ডিম সবুজ শাকসবজি ও হলুদ রঙের ফলমূল) খাওয়াপ্রতিদিন ভিটামিন সিযুক্ত খাবার খাওয়াআয়োডিনসমৃদ্ধ খাবার (সামুদ্রিক মাছ এবং সমুদ্র তীরবর্তী এলাকার শাকসবজি) এবং আয়োডিনযুক্ত লবণ খাওয়াপ্রতিদিন ১০১২ গ্লাস পানি পান করাচিকিৎসক বা স্বাস্থ্যকর্মীর পরামর্শ অনুযায়ী কিশোরীদের আয়রনফলিক অ্যাসিড (IFA) ট্যাবলেট খাওয়া (প্রতি সপ্তাহে ১টি করে খাবে)প্রত্যেক কিশোরকিশোরীকে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ছয়মাস পর পর কৃমিনাশক বড়ি গ্রহণ করাখাবার খাওয়ার আগে ও পরে সাবান এবং নিরাপদ পানি দিয়ে হাত ধোয়াস্বাস্থ্যসম্মত টয়লেট ব্যবহার করা এবং জুতা বা স্যান্ডেল পরে টয়লেটে যাওয়ামাসিকের সময় পরিষ্কারপরিচ্ছন্ন থাকা মনে রাখতে হবে যে এ সময় সব ধরনের খাবার খাওয়া যায় এবং সব স্বাভাবিক কাজকর্ম করা যায়দেরিতে বিয়ে ও দেরিতে গর্ভধারণ করা (১৮ বছরের পরে)কিশোরীকে টিডি (টিটেনাসডিপথেরিয়া) টিকার ৫টি ডোজ সম্পূর্ণ করা বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার মতে (১৯৪৮) স্বাস্থ্য শুধুমাত্র রোগ বা দুর্বলতার অনুপস্থিতিই নয় বরং এমন একটি অবস্থা যেখানে পরিপূর্ণ শারীরিক মানসিক এবং সামাজিক সুস্থতা বিদ্যমান বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সংজ্ঞা অনুযায়ী ১০১৯ বছর হচ্ছে কৈশোরকাল শৈশব ও যৌবনের সন্ধিক্ষণে দ্রুত ও গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের সময়কালই কৈশোর হিসেবে ধরা হয় এটি জীবনের এমন একটি সময় যখন মানুষ শিশু বা বয়স্ক কোনটাই নয় কৈশোরকালে মানুষের জীবনে অনেক রকম শারীরিক ও মানসিক পরিবর্তন হয় এছাড়াও কৈশোরকালে সামাজিক প্রত্যাশা ও ধারণা পরিবর্তিত হয় এই সময়ে সূক্ষ্ম ও বিমূর্ত বিষয় নিয়ে চিন্তা করার ক্ষমতা ও আত্মসচেতনতা তৈরি হয় এবং সমাজ তার কাছে মানসিক পরিপক্কতা আশা করেবয়ঃসন্ধিকাল হচ্ছে কৈশোরকালীন শারীরিক পরিবর্তনের প্রক্রিয়া যখন কিশোরকিশোরীরা যৌন পরিপক্কতা লাভ করে বয়ঃসন্ধি শারীরিক পরিবর্তনসমূহকে নির্দেশ করে এবং কৈশোরকাল শৈশব ও যৌবনে মানসিক ও সামাজিক পরিবর্তনসমূহকে তুলে ধরে জীবনের অন্য সময়ের চেয়ে কৈশোরে সবচেয়ে বেশি মানসিক ও শারীরিক পরিবর্তন হয়ে থাকে এ পরিবর্তনগুলো হলোপ্রজননতন্ত্রের বৃদ্ধি যৌন বৈশিষ্ট্য ও আচরণের প্রকাশ এবং পরিপক্কতাপূর্ণ মানুষ হিসেবে স্বকীয়তা ও পরিচিতি এবংমানসিক ও আর্থসামাজিক পরনির্ভরতা থেকে কিছুটা আত্মনির্ভরতাকৈশোরকালীন সময়ে দ্রুতগতিতে বৃদ্ধি হয় এই সময়ে তাদের শরীরের আকৃতি ও শক্তি বৃদ্ধি পায় এবং তারা প্রজননক্ষম হয় তাদের চিন্তার বিকাশ ঘটে এবং পরিবারের বাইরে বন্ধুবান্ধব ও অন্যান্যদের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপন করে সেই সাথে নতুন জ্ঞান ও দক্ষতা অর্জিত হয় এবং নতুন দৃষ্টিভঙ্গি তৈরি হয় মাসিককালীন সময়ে মেয়েদের বিভিন্ন ধরনের পুষ্টিকর খাবার প্রচুর পরিমাণে খাওয়া প্রয়োজন কারণ তাদের দেহ থেকে প্রতিমাসে রক্তক্ষরণ হয় এ ঘাটতি পূরণের জন্য আমিষ (ডাল সিমের বীচি বাদাম দুধ এবং দুধজাতীয় খাদ্য ডিম মাছ মাংস ইত্যাদি) আয়রন (গাঢ় সবুজ শাকসবজি ও ফল কলিজা ইত্যাদি) ক্যালসিয়াম (দুধ ও দুধজাতীয় খাদ্য ছোটমাছ ইত্যাদি) ভিটামিন সি (লেবু আমলকি পেয়ারা ইত্যাদি) খেতে হবেপ্রতিদিন ভালোভাবে গোসল এবং প্রজনন অঙ্গ পানি ও সাবান দিয়ে পরিষ্কার করতে হবেমাসিকের সময় ঘরে তৈরি পরিষ্কার ন্যাপকিন/কাপড় অথবা স্যানিটারি ন্যাপকিন ব্যবহার করতে হবে কাপড় ব্যবহার করলে ব্যবহারের পর কাপড়টি সাবান ও পানি দিয়ে ধুতে হবে এবং সূর্যের আলোতে শুকিয়ে নিয়ে পরিষ্কার প্যাকেটে পরবর্তীতে ব্যবহারের জন্য রেখে দিতে হবেরক্তস্রাবের পরিমাণ অনুযায়ী স্যানিটারি ন্যাপকিন বা কাপড় দিনে অন্ততপক্ষে ৪ থেকে ৬ বার বদলাতে হবে একটি প্যাড একবারই ব্যবহার করতে হবে এবং ব্যবহারের পর তা কাগজে মুড়িয়ে ডাস্টবিনে/ময়লা ফেলার নির্দিষ্ট স্থানে/গর্তে ফেলতে হবেমাসিকের সময় স্বাভাবিক হাঁটাচলা ও হালকা ব্যায়াম করতে হবে এবং পর্যাপ্ত পরিমাণে ঘুমাতে হবেকৌষ্ঠকাঠিন্য এড়াতে প্রচুর পানি শাকসবজি এবং ফলমূল খেতে হবেমাসিক বন্ধ থাকলে একমাসে ২/৩ বার মাসিক হলে প্রচুর রক্তক্ষরণ বা প্রচন্ড ব্যথা হলে চিকিৎসকের পরামর্শ নিতে বলতে হবে বাংলাদেশের আইনে বিবাহযোগ্য বয়স মেয়েদের জন্য কমপক্ষে ১৮ ও ছেলেদের ২১ বছর এর নিচে হলে তা বাল্যবিবাহ ১) দরিদ্রতা২) কন্যাদায়গ্রস্ত পিতার দায়মুক্ত হওয়া৩) সামাজিক নিরাপত্তাহীনতা৪) শিক্ষা ও সচেতনতার অভাব৫) মেয়েশিশুর প্রতি অবহেলা বা তাকে বোঝা মনে করা৬) স্কুল থেকে ঝরে পড়া৭) বিবাহ আইন সম্পর্কে ধারণা কম থাকা৮) বাল্যবিবাহ নিরোধ আইনের যথাযথ প্রয়োগ না হওয়া৯) প্রচলিত সামাজিক প্রথা ও কুসংস্কার এবং১০) জেন্ডার বৈষম্য বাল্যবিবাহ কিশোরীর জীবনে চরম বিপদ ডেকে আনে কারণ বিয়ের পরপরই কিশোরী গর্ভধারণ করে যা তার জন্য অত্যন্ত ঝুঁকিপূর্ণ এসময় কিশোরীর নিজেরই শারীরিক বৃদ্ধি অসম্পূর্ণ থাকে যা গর্ভধারণের জন্য উপযুক্ত নয় বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ করতে যা করা উচিত ছেলেমেয়ে সকলের জন্ম নিবন্ধন করাবিয়ে পড়ানোর সময় কাজি যেন অবশ্যই জন্মসনদ দেখে বিয়ে পড়ান সে ব্যাপারে কাজিকে সচেতন করাবাল্যবিবাহের আইন সম্পর্কে কাজি অভিভাবক ও জনসাধারণকে সচেতন করাবাল্যবিবাহ ও এর ভয়াবহ পরিণতি সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরি করাবাল্যবিবাহ হলেও জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতি ব্যবহার ও দেরিতে সন্তান গ্রহণে কিশোরকিশোরী ও অভিভাবকদের সচেতন করাকিশোরকিশোরীদের জন্য উপযুক্ত জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতির সহজপ্রাপ্যতা নিশ্চিত করাবাল্যবিবাহ নিয়ে কমিউনিটি পর্যায়ে আলোচনা ও প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করাবাল্যবিবাহ নিরোধ আইন ২০১৭ ও বাল্যবিবাহ নিরোধ বিধিমালাএর বাস্তব প্রয়োগে সংশ্লিষ্টদের সঠিক দায়িত্ব পালন জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা হলো মেয়েশিশুসহ বিভিন্ন বয়সের নারী ও তৃতীয় লিঙ্গের মানুষের বিরুদ্ধে সংঘটিত আচার আচরণ যা ব্যক্তির স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত করে পারিবারিক সামাজিক ও ধর্মীয় অনুশাসন আইনগত বিধান দ্বারা আরোপিত ব্যবস্থায় সর্বক্ষেত্রে শুধুমাত্র নারী বা তৃতীয় লিঙ্গের মানুষ হিসেবে জন্মগ্রহণ করার কারণে যেভাবে অর্থনেতিক সামাজিক শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন আক্রমণ হুমকি ও আঘাতের শিকার হয় তাই জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা ১) শারীরিক নির্যাতন২) মানসিক নির্যাতন৩) যৌন নির্যাতন৪) আর্থিক ক্ষতি৫) যৌন হয়রানি কিশোরকিশোরীদের প্রতি সহিংসতার বিভিন্ন রূপদৈহিক সহিংসতাযৌন সহিংসতামানসিক সহিংসতাঅর্থনৈতিক সহিংসতাসাইবার ক্রাইমবুলিংবাল্যবিবাহপাচারযৌন হয়রানি/ইভটিজিংএসিড নিক্ষেপপর্নোগ্রাফি ও অশ্লীল প্রকাশনাপতিতাবৃত্তিশিশুশ্রম বুলিং বলতে কাউকে মানসিক বা শারীরিকভাবে হেনস্তা করা বোঝায় কাউকে অপমান অপদস্ত করা কারো সামনে কাউকে হেয় করা এগুলোই বুলিং অনেক সময় কাউকে অপদস্ত করাকে অনেকে মজা হিসেবে দেখে কিন্তু যে ব্যক্তির সাথে মজা করা হয় তিনি বুলিং এর শিকার হন উদাহরণ স্বরূপ কারো গায়ের রং শরীরের গঠন উচ্চতা ইত্যাদি বিষয় নিয়ে মজা করা কাউকে আপত্তিকর ভাষায় ডাকা ইত্যাদি সাইবার বুলিং/সাইবার হয়রানী বলতে বোঝায় কাউকে ইলেকট্রনিক মাধ্যমের সহায়তায় বুলিং করা এটাকে আজকাল অনলাইন বুলিংও বলা হয় কিশোর বয়সের ছেলেমেয়েদের মধ্যে আজকাল এই সমস্যাটা খুব বাড়ছে এটা হতে পারে মিথ্যা প্রচারনামূলক হুমকি যৌন হয়রানী করা যার পেছনের উদ্দেশ্য থাকে কারো ক্ষতি করা২০১৬ সালে বিশ্বখ্যাত টেলিনর গ্রূপের করা এক গবেষণায় দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের স্কুলে যাওয়া শিশুদের প্রায় ৪৯ নানা ধরণের বুলিংয়ের শিকার হয় সবচেয়ে আশংকার ব্যাপার হলো এর মধ্যে ২৯ শিশু সাইবার বুলিংয়ের কারণে বিষণèতায় ভোগে ১) ফেসবুক২) হোয়াটস্ অ্যাপস৩) ইমো৪) ভাইবার৫) ম্যাসেন্জার ইত্যাদি ১) হতাশা২) উদ্বেগ৩) ঘুম ও খাদ্যাভাসে পরিবর্তন৪) নানা ধরনের শারীরিক ও মানসিক সমস্যার কথা বলা৫) অন্যদের থেকে নিজেকে বিচ্ছিনড়ব করে রাখা৬) আত্মহত্যার ঝুঁকি ১) অপরিচিত কারও সাথে অনলাইনে বন্ধুত্ব বা অন্য কোন সুসম্পর্কে না জড়ানো২) অপরিচিত কারও সাথে অনলাইনে কোন ধরণের ব্যক্তিগত মেসেজ দেয়া থেকে বিরত থাকা৩) বিরক্তিকর ব্যক্তিকে ব্লক করে দেওয়া৪) সাইবার বুলিং নিয়ে বিশ্বস্ত কাউকে জানানো৫) অন্যান্য শিক্ষার্থী শিক্ষকশিক্ষিকা এবং স্কুল কর্তৃপক্ষকে জানানো এবং সাইবার বুলিং প্রতিরোধে নিয়মনীতি প্রণয়ন করা৬) সাইবার বুলিং প্রতিরোধে সচেতনতা বাড়ানো ১) পারিবারিক ও বন্ধুবান্ধবের মধ্যকার বন্ধন জোরদার করা২) সন্তান ও বাবামা/অভিভাবকের মধ্যে নিরাপদ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক সৃষ্টি৩) শিশু ও কিশোরকিশোরীদের জীবনমুখী প্রশিক্ষণ যেমন কীভাবে নিজেকে সুরক্ষিত রাখা যাবে রাগ নিয়ন্ত্রণ সামাজিক দক্ষতা বিকাশ প্রশিক্ষণ কীভাবে বাবামা ও বন্ধুদের সাথে দ্বন্দ্ব কাটানো যাবে কম্পিউটার ও কারিগরি প্রশিক্ষণ ইত্যাদি৪) মাদকের অপব্যবহার ও সহজলভ্যতা হ্রাস৫) জেন্ডার বৈষম্য দূরীকরণের লক্ষ্যে বিবিধ সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা৬) নারী ও শিশুর প্রতি সহিংসতা দমন আইন সম্পর্কে জনগণ ও জনপ্রশাসনকে সোচ্চার করা৭) সমাজে বেকারত্ব হ্রাস দারিদ্র বিমোচন করার লক্ষ্যে ক্ষুদ্রশিল্প প্রশিক্ষণ এবং সহজ শর্তে ঋণ প্রদান এটি একটি ক্রনিক রিল্যাপ্সিং ব্রেইন ডিজিজ বা পুনরায় হতে পারে এমন দীর্ঘমেয়াদি মস্তিষ্কের রোগ ক্রমাগত মাদক নিতে নিতে এক পর্যায়ে ব্যক্তিটি পুরোপুরি মাদকনির্ভর হয়ে পড়ে ও মাদক ছাড়া চলে না এই অবস্থাই হচ্ছে মাদকে আসক্তি মাদকদ্রব্যের সহজলভ্যতামাদকদ্রব্য সমন্ধে কৌতূহলবন্ধুদের চাপে পড়ে মাদক গ্রহণহতাশা ব্যর্থতার কাটাতে মাদক গ্রহণপারিপার্শিক পরিবেশের প্রভাবনিছক আনন্দের জন্য মাদকাসক্তির লক্ষণসমূহদৈনন্দিন এবং সাধার কাজকর্ম থেকে নিজেকে সরিয়ে নেয়াসময়মত কাজ সম্পন্ন করতে না পারামানসিকতার দ্রুত পরিবর্তন হয়প্রচুর মিথ্যা কথা বলাকথায় কথায় অন্যদেরকে দোষারোপ করাদৈনন্দিন কাজে আগ্রহের অভাবকথায় অসংলগ্নতাঅন্যদের সাথে যোগাযোগ করার দক্ষতার অভাববিরক্তিকথা দিয়ে কথা না রাখাঅপরাধবোধআবেগের অস্থিতিশীলতা (হঠাৎ খুব রেগে যাওয়া)ঘম ঘম ভাব/ঝিম ধরা ভাবঅতিরিক্ত কথা বলা অথবা একেবারেই কথা না বলাব্যক্তিত্বের পরিবর্তনআচরনের জন্য কার দর্শানোউদ্বিগ্নতা (Anxiety)বিষন্নতা (Depression)একা থাকা ইত্যাদি মাদকাসক্ত ব্যক্তি মনে করে তারা মাদককে খব সহজেই ছেড়ে দিতে পারবে কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় মাদকদ্রব্য সেবনের ফলে মাদকের প্রতি তীব্র আকর্ষ সৃষ্টি হয় তাই তারা মাদকদ্রব্য ছাড়তে পারেনা ফলে তাদের মাদকদ্রব্য গ্রহরে পরিমাণ দিনে দিনে বৃদ্ধি পায় কোন কারে মাদকদ্রব্য সেবন করতে না পারলে মাদকের অভাবে বিভিন্ন ধরণের শারীরিক ও মানসিক সমস্যা দেখা দেয় যেসব বন্ধুরা মাদক গ্রহে উৎসাহ যোগায় অথবা সহযোগিতা করে তাদের থেকে দূরে থাকাকোন কারে মন খারাপ থাকলে Relaxation Exercise করা (Reference মানসিক চাপ ব্যবস্থাপনার Relaxation Exercise)যেসব ছাত্রছাত্রী একবার অথবা একাধিকবার কিছুটা মাদক নিয়েছে যেমন কোন ছাত্রছাত্রী হয়তোবা কখনও সিগারেট খেয়েছে এবং এখন তার আবার খেতে ইচ্ছে করছে সেই মহূর্তে সে পানি চকলেট বা অন্য কিছু খেতে পারেমাদক কে না বলানিজের সাথে প্রতিজ্ঞা করা১) আমরা নিজেকে ভালোবাসব২) আমরা পরিবার সমাজ ও দেশের একজন গুরুত্বর্পূ মানষ হিসেবে অবদান রাখার জন্য আজ থেকে আমরা সবাই মাদককে না বলবো৩) আমরা কখনই মাদক গ্রহ করবোনা আমরা কখনই মাদক গ্রহ করবোনা আমরা কখনই মাদক গ্রহণ করবোনা (সবাই মিলে একসাথে তিনবার বলবে) বয়সের সঙ্গে নারীদের জীবদ্দশায় শরীরের স্বাভাবিক হরমোনের তারতম্যের কারণে মুখগহ্বরে বেশ কিছু স্বল্প মেয়াদি পরিবর্তন আসে সঠিক পরিচর্যার অভাবে এখান থেকে বড় ধরনের জটিলতার আশঙ্কাও রয়ে যায় যেমন বয়ঃসন্ধিকালইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনের আধিক্যের কারণে মাড়িতে স্বাভাবিকের তুলনায় রক্ত প্রবাহ বেশি থাকে ফলে সামান্য কিছুতেই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়ার প্রবণতা থাকে মাড়ি ফুলে যেতে পারে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে ডেন্টাল ক্যারিজের প্রবণতাও বাড়তে পারে মেনস্ট্রুয়েশন পিরিয়ডপিরিয়ডের সময়ে রক্তে প্রোজেস্টেরন হরমোনের মাত্রা বেড়ে যাওয়ার ফলে মাড়ি উজ্জ্বল দেখায় ও ফুলে যায় মাড়িতে ব্যথাসহ ছোট এপথাস আলসারসহ কিছু ঘা বা ক্ষত হতে পারে লালা গ্রন্থি ফুলে যেতে পারে মাসিকের ২ থেকে ৩ দিন আগে উপসর্গগুলো শুরু হলেও কয়েকদিনে ভালো হয়ে ওঠে জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবনপ্রোজেস্টেরন সম্পর্কীয় ওষুধে মাড়িতে নানা ধরনের প্রদাহ দেখা দিতে পারে বিশেষ করে ওষুধ নেওয়ার প্রথম কয়েক মাস ইস্ট্রোজেন সম্পর্কীয় ওষুধ শরীরে প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেন কমিয়ে কৃত্রিম ইস্ট্রোজেন বাড়িয়ে দেয় ফলে মুখের একমাত্র নড়াচড়াক্ষম জয়েন্ট টেম্পেরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্টে নানা সমস্যার কারণে মুখ খুলতে খাবার চর্বণে এমনকি মুখ নাড়াচাড়া করতে কষ্ট হতে পারে গর্ভকালগর্ভাবস্থায় হরমোনের ব্যাপক তারতম্য ঘটে স্পর্শকাতর এ সময়ে প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যাওয়াতে মুখের মধ্যকার জীবাণু সক্রিয় হয়ে ওঠে গর্ভাবস্থার ২ থেকে ৮ মাসের মধ্যে দাঁতে গর্ত দাঁত শিন শিন করা মাড়ি ফুলে রক্ত পড়া খুব সাধারণ মুখ পরিষ্কারে অনিহা বা বমি বমি ভাবের জন্য মুখগহ্বর রোগের অভয়ারণ্য হয়ে ওঠে অন্যদিকে মুখের রোগ থেকে অপরণীত গর্ভপাত ও গর্ভের শিশুর মানসিক ও শারীরিক জটিলতা হতে পারে প্রথম ও শেষ তিন মাস চিকিৎসা গ্রহণেও সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন জরুরি মেনোপজকালনারীদের মেনোপজে মুখে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা খুব সাধারণ এর সঙ্গে যোগবাঁধে অন্যরোগ মুখের স্বাদ কমে যাওয়া মুখে জ্বালা পোড়া করা অল্পতে ঝাঁল অনুভূতি ঠান্ডা বা গরম খাবারে অতিসংবেদনশীলতা মুখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে নানা পরিবর্তন হতে পারে এসময়ে ক্যারিজ বা দাঁতক্ষয় মাড়ি রোগ চোয়ালের হাড় ক্ষয় থেকে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারে করণীয় প্রত্যেকদিন নিয়ম মেনে সকালে নাশতার পর ও রাতে ঘুমানোর আগে নরম টুথ ব্রাশ ও ফ্লোরাইড যুক্ত টুথপেস্ট দিয়ে দাঁতের পাঁচটি পৃষ্ঠ পরিষ্কার বিশেষ প্রয়োজনে জীবাণু ধ্বংসকারক মাউথ ওয়াশ ব্যবহার দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থানে ডেন্টাল ফ্লস দিয়ে পরিষ্কার সমস্যা বা উপসর্গ না হলেও ছয়মাস পর পর অনুমোদিত ডেন্টাল চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া যাতে রোগের প্রদুর্ভাব শুরুতেই ধরা পড়ে স্বাস্থ্যবান্ধব খাবার গ্রহণ গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে মুখ পরিষ্কার মেনোপোজে গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন থেরাপি নারীদের মেনোপজের পর হরমোনের পরিবর্তন যা ঘটে এ জন্য মধ্য দেশে জমতে পারে মেদ উষ্ণ ঝলক রাতে ঘাম মেজাজের চড়াইউতরাই বেশ নজরে পড়ে কিন্তু বাথরুম স্কেলে দেহ ওজন মাপা হয় না ওজনও বাড়েশরীরে ওজন বিতরণ বদলে যায় তলপেটে জমতে থাকে মেদমেনোপজের আগে আগে সে সময় ও পরে স্ত্রী হরমোন ইস্ট্রোজেন কমতে থাকে বিপাক হয় শ্লথ তখন ওজন হ্রাস করা হয়ে পড়ে কঠিন জমে মেদ তলপেটে এতে ডায়াবেটিস হৃদরোগ কিছু ক্যান্সারও আগাম মৃত্যুর ঝুঁকি বাড়েকী করা যায় ব্যায়াম করতে হবে নিয়মিত এরোবিক ব্যায়াম যেমন দ্রুত হাঁটা সাইকেল চালানো সাঁতার কাটা ভার উত্তোলন প্রতি সপ্তাহে অন্তত মোট ১৫০ মিনিট মাঝারি ও কঠোর ব্যায়াম যতদূর সম্ভব বসার চেয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন কারণ যত বেশি শরীর থাকে সচল তত বেশি ক্যালোরি পোড়ে বেশিরভাগ সময় ঋজু থাকুন হাঁটুন কথা বলুন কোনো গাড়ি দূরে পার্ক করে হেঁটে যান অফিসে কম্পিউটার নিয়ে যারা কাজ করেন তারা স্ট্যান্ডিং ডেসক ব্যবহার করুন খাবারের পরিমাণ কমান সঠিক সময়ে খানসকালে ভরপেট প্রাতঃরাশ মাঝারি মধ্য আহার ও রাতে হালকা খাবার মূল খাবার মধ্যাহ্নে ভালো রাতে হালকা খাবার বাছতে হবে বিজ্ঞজনোচিতভাবে স্বাস্থ্যকর চর্বি খান উদ্ভিজ্জ চর্বি যেমন জলপাই ও বাদাম এভোক্যাডো মনোযোগী হয় যেন খাওয়া অমনোযোগে আহার হয় বেশি ব্যায়ামে নতুন বৈচিত্র্য যেন থাকে যেমন ইয়োগা ওয়েট ট্রেনিং চাই সুনিদ্রা ব্যায়ামের জন্য খুঁজে নিন সঙ্গী ডাক্তারের পরামর্শ নিন মেয়েদের জীবদ্দশায় বিশেষ পাঁচটি সময়ে শরীরের স্বাভাবিক হরমোন বা গ্রন্থিরসের তারতম্যের জন্য মুখগহ্বরে নানা উপসর্গ দেখা দিতে পারেএ সময়গুলোতে মুখের যত্নে অধিকতর সচেতন থাকার বিষয়ে শক্তভাবে পরামর্শ দিচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা তা না হলে স্বাভাবিক ও ক্ষণস্থায়ী এমন পরিবর্তন নানা অপূরণীয় ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারেপর্যায়১ বয়ঃসন্ধিকালইস্ট্রোজেন ও প্রোজেস্টেরনে অধিকতর কারণে মাড়িতে রক্ত প্রবাহ বেশি থাকে ফলে সামান্য কিছুতেই মাড়ি দিয়ে রক্ত পড়তে পারে মাড়ি ফুলে যেতে পারে মুখে দুর্গন্ধ হতে পারে ডেন্টাল ক্যারিজের প্রবণতাও বাড়তে পারেপর্যায়২ মেনস্ট্রয়েশন সময়কালমাসের বিশেষ দিনগুলোতে রক্তে প্রোজেস্টেরন হরমোনের আধিক্যের জন্য মাড়ি উজ্জ্বল দেখায় ও ফুলে যায় মাড়িতে এপথাস আলসারসহ কিছু ঘা বা ক্ষত হতে পারে লালাগ্রন্থি ফুলে যেতে পারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মাসিকের ২ থেকে ৩ দিন আগে এমন উপসর্গগুলো শুরু হলেও এগুলো ক্ষণস্থায়ী হয়পর্যায়৩ জন্মনিয়ন্ত্রক ওষুধ সেবনকালপ্রোজেস্টেরন সম্পর্কীয় ওষুধে মাড়িতে নানা ধরনের প্রদাহ দেখা দিতে পারে বিশেষ করে ওষুধ গ্রহণের প্রথম কয়েক মাস ইস্ট্রোজেন সম্পর্কীয় ওষুধ শরীরে প্রাকৃতিক ইস্ট্রোজেন কমিয়ে কৃত্রিম ইস্ট্রোজেন বাড়িয়ে দেয় ফলে মুখের একমাত্র নড়াচড়াক্ষম জয়েন্ট টেম্পেরোম্যান্ডিবুলার জয়েন্টে নানা সমস্যার কারণে মুখ খুলতে খাবার চর্বণে এমনকি মুখ নাড়াচাড়া করতে কষ্ট হতে পারেপর্যায়৪ গর্ভকালগর্ভাবস্থায় হরমোনের ব্যাপক তারতম্য ঘটে বিশেষ করে প্রোজেস্টেরনের মাত্রা বেড়ে যাওয়াতে মুখের মধ্যকার জীবাণু সক্রিয় হয়ে ওঠে গর্ভাবস্থার ২ থেকে ৮ মাসের মধ্যে দাঁতে গর্ত দাঁত শিন শিন করা মাড়ি ফুলে গিয়ে রক্ত পড়া বা প্রেগনেন্সি ইপিউলিস খুব সাধারণ মুখ পরিষ্কারে অনিহা বা বমি বমি ভাবের জন্য মুখগহ্বর রোগের অভয়ারণ্য হয়ে ওঠে এ সময়টিতে অধিক সচেতন থাকতে হবেপর্যায়৫ মেনোপজকালবয়স্কদের মেনোপজে মুখে বিভিন্ন ধরনের জটিলতা খুব সাধারণ এর সঙ্গে যোগ হয় অন্যান্য রোগ নিয়ন্ত্রণে কোনো সেবনকৃত ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সাধারণ মুখের স্বাদ কমে যাওয়া মুখে জ্বালাপোড়া করা একটুতেই ঝাল অনুভূতি ঠাণ্ডা বা গরম খাবারে অতিসংবেদনশীলতা মুখ শুষ্ক হয়ে যাওয়া থেকে শুরু করে নানা পরিবর্তন স্পষ্ট হয় এ সময়ে ক্যারিজ বা দাঁত ক্ষয় মাড়ি রোগ চোয়ালের হাড় ক্ষয় থেকে নানা রোগের প্রাদুর্ভাব ঘটতে পারেকরণীয় প্রত্যেকদিন নিয়ম মেনে সকালে নাস্তার পর ও রাতে ঘুমানোর আগে নরম টুথ ব্রাশ ও ফ্লোরাইডযুক্ত উন্নতমানের টুথপেস্ট দিয়ে নিয়ম মেনে ২ মিনিট মুখ পরিষ্কার বিশেষ প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শে জীবাণু ধ্বংসকারক মাউথ ওয়াশ ব্যবহার দুই দাঁতের মধ্যবর্তী স্থানে সঠিক পদ্ধতিতে ডেন্টাল ফ্লস বা ইন্টার ডেন্টাল ব্রাশ দিয়ে পরিষ্কার রাখা টুথ পিক বা কোনো ধাতব কাঠিকে শক্তভাবে নিরুৎসাহিত করা হয় ছয় মাস পরপর অনুমোদিত ডেন্টাল চিকিৎসকের পরিমর্শ নেয়া বিগত কয়েকমাস কোভিডকালে যৌক্তিক কারণে ডেন্টাল রোগীদের ঘরে বসে টেলিমেডিসিনের মাধ্যমে কষ্ট লাঘবে প্রচেষ্টার কথা বলা হলেও বর্তমান নিউ নরমাল সময়ে অনেক ডেন্টাল ক্লিনিক সাধ্যমতো করোনা রোধের বিষয়টি নিয়ন্ত্রণে উপযুক্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করে রোগী দেখা শুরু করেছে এখন পর্যন্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া ডেন্টাল ক্লিনিকে না যাওয়াই ভালো আর প্রয়োজন পড়লে অবশ্যই বিশ্বস্ত ডেন্টাল চিকিৎসকের সঙ্গে টেলিফোনের মাধ্যমে সময় ও তারিখ চূড়ান্তের পাশাপাশি কীভাবে নিজেকে বিপদমুক্ত রেখে ক্লিনিকে আসবেন সেটার ধারণা নিয়ে আসতে হবে কোভিডের সামান্য কোনো উপসর্গ সম্ভাবনা বা ইতিহাস থাকলে সেটা স্পষ্ট করতে হবে কারণ প্রতিটি রোগীর জন্য ক্লিনিকে বিশেষ ব্যবস্থা নিতে হয় স্বাস্থ্যবান্ধব খাবার গ্রহণ ও মিষ্টিজাতীয় খাবার কম খাওয়া গর্ভাবস্থায় চিকিৎসকের তত্ত্বাবধানে মুখ পরিষ্কার রাখার বিষয়টি নিশ্চিত করা বিশেষ প্রয়োজনে মেনপোজে গাইনি চিকিৎসকের পরামর্শে হরমোন থেরাপি শরীরের অন্যান্য রোগকে নিয়ন্ত্রণ ও দুশ্চিন্তামুক্ত থাকার চেষ্টা প্রতিদিন সময় করে হাঁটা বা ব্যায়ামের অভ্যাস করা এমএস হল একটা দীর্ঘস্থায়ী রোগ যেটা মস্তিষ্ক স্পাইনাল কর্ড এবং চোখের স্নায়ুকে প্রভাবিত করে যেহেতু এই অসুখটি শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা দ্বারা নিজের টিস্যুকেই আক্রান্ত করে তাই এমএসকে অটোইমিউন অসুখও বলা হয় এই অবস্থায় শরীর মাইলিনে ক্ষতি সৃষ্টি করে যেটা হলো একটা চর্বিযুক্ত পদার্থ যা মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কর্ডে নার্ভ ফাইবার্সকে ঘিরে থাকে এই হানি অধিকতর হওয়ার ফলে স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে বার্তা সরবরাহ পরিবর্তীত বা বন্ধ হয়ে যায় উপসর্গগুলি নিম্নে প্রথম দ্বিতীয় এবং তৃতীয় পর্যায়ে শ্রেণীবদ্ধ রয়েছেপ্রথম পর্যায়ভুক্ত উপসর্গসাধারণঅসাড়তা ও ঝনঝন করাচুলকানিজ্বলাহাঁটতে অসুবিধা (ক্লান্তি দুর্বলতা মাংসপেশীর সমস্যা ভারসাম্যের অভাব বা কাঁপার কারণে)দেখতে অসুবিধাকোষ্ঠকাঠিন্য এবং ব্লাডারের অকার্যকারীতামাথা ঘোরাযৌন সমস্যাবিরল উপসর্গগিলতে অসুবিধাকথা বলাতে সমস্যাশ্বাস নিতে অসুবিধাকানে কম শোনাখিঁচুনিমাথাব্যথাদ্বিতীয় পর্যায়ভুক্ত উপসর্গইউরিনারী ট্র‍্যাক্টে সংক্রমণশরীরের নিষ্কৃয়তাগতিশীলতা হারানোতৃতীয় পর্যায়ভুক্ত উপসর্গসামাজিক দুশ্চিন্তাবৃত্তিমূলক জটিলতাশিখতে অসুবিধাহতাশা এমএসের কারণ অজানা যাইহোক পরিবেশগত এবং জেনেটিক বিষয়গুলি এই অসুখের জন্য দায়ী হতে পারেএমএসের জন্য দায়ী ঝুঁকির বিষয়গুলি নিম্নে উল্লেখ করা হল15 এবং 60 বছরের মানুষেরা সাধারণত আক্রান্ত হয়পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের বেশী এমএস হতে দেখা যায়এমএস এর পারিবারিক ইতিহাসভাইরাস যেমন এপস্টাইনবার ভাইরাস এমএসে সাথে যুক্তথাইরয়েড ডায়াবেটিস বা ইনফ্ল্যামাটরি বাওয়েল ডিজিজে ভোগা ব্যক্তিদের আক্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা সবথেকে বেশিরক্তে ভিটামিন ডি এর মাত্রা কম হওয়ানিরক্ষরেখা থেকে দূরে থাকাবেশী ওজনধূমপান যেহেতু এমএসের উপসর্গগুলি অন্যান্য স্নায়ুর রোগগুলির অনুকারী হতে পারে তাই এই রোগের নির্ণয় করা কঠিনচিকিৎসক আপনার মেডিকেল ইতিহাস জানতে চাইতে পারেন এবং আপনার মস্তিষ্ক স্পাইনাল কর্ড এবং চোখের স্নায়ুর লক্ষণ দেখতে পারেননিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলো এমএসএর নির্ণয়ে সাহায্য করতে পারেএকইরকমের উপসর্গ থাকা রোগগুলি বাতিল করতে রক্তপরীক্ষা করা হয়ভারসাম্যের মূল্যায়ণসমন্বয় দৃষ্টি এবং স্নায়ুর কার্যকরীতা নির্ধারণ করতে অন্যান্য ক্রিয়াকলাপ করা হয়ম্যাগ্নেটিক রেসোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) শরীরের কাঠামো দেখার জন্য করা হয়প্রোটিনের অস্বাভাবিকতা নির্ণয়ের জন্য সেরেব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড ব্যবহার হয়আপনার মস্তিষ্কের ইলেক্ট্রিকাল সক্রিয়তা পরিমাপ করার জন্য পরীক্ষা করা হয়এমএসের কোনো চিকিৎসা নেই কিন্তু কিছু চিকিৎসা শরীরের ক্রিয়াকলাপ উন্নত করতে পারে তার মধ্যে রয়েছেঅসুখের গতি কমাতে আক্রমণ আটকাতে অথবা চিকিৎসা করতে এবং উপসর্গগুলিকে আরাম দিতে ওষুধ দেওয়া হয় স্টেরয়েড এমএস আক্রমণের গতি কম করে এবং তীব্রতা কমায় পেশী রিলাক্সান্টস্ বা ট্র্যাঙ্কুইলাইজারস পেশীর খিঁচুনি শিথিল করেফিজিওথেরাপি শক্তি এবং ভারসাম্য রক্ষা করতে এবং ক্লান্তি ও ব্যথা দূর করতে সাহায্য করেএকটা লাঠি ওয়াকার বা ব্রেসেসের সাহায্যে আপনি সহজে হাঁটতে পারবেনক্লান্তিভাব ও চাপ কমাতে ব্যায়াম ও যোগা দরকার মস্তিস্ক ও সুষুম্নাকাণ্ডের চারপাশে ঘিরে থাকা যে টিস্যু স্তরের আবরণগুলি এদের সুরক্ষিত রাখতে সাহায্য করে সেটি হল মেনিনজেস এই টিস্যু স্তর ও তার চারিপাশের তরলে সংক্রমণ ঘটলে মস্তিষ্কের প্রদাহ ও ফোলাভাব দেখা দেয় সময়মত ধরা না পড়লে এবং চিকিৎসা না হলে এই সমস্যার ফলে প্রাণহানি হতে পারে মেনিনজাইটিস রোগটি সংক্রামক অথবা অসংক্রামক হতে পারে সংক্রামক মেনিনজাইটিস ঘটায় কিছু জীবাণু যারা রক্তপরিবহনের মাধ্যমে দেহে ছড়িয়ে পড়ে মস্তিস্ক বা সুষুম্নাকান্ডে পৌঁছে যায় এইসব জীবাণু মেনিনজেস ও চারিপাশের তরলে সংক্রমণ ঘটালে সেখানে প্রদাহ ও ফোলাভাব সৃষ্টি হয় মেনিনজাইটিসের জন্য দায়ী জীবাণুগুলি হলব্যাকটেরিয়া সট্রেপ্টোকক্কাস নিউমোনি নিসারিয়া মেনিনজাইটিডিসভাইরাস ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাস মিসলস (হাম) ভাইরাস এইচআইভি এবং একোভাইরাসফাঙ্গি বা ছত্রাক ক্যান্ডিডা এলবিক্যান্স ক্রিপ্টোকক্কাস নিওফর্মানস এবং হিস্টোপ্লাজমাঅসংক্রামক মেনিনজাইটিসের কারণগুলি হলক্যান্সাররাসায়নিক প্রতিক্রিয়াড্রাগ এলার্জিমাথার আঘাত বা মস্তিষ্কে এবসেস (সীমাবদ্ধ প্রদাহ)লুপাস দ্রুত চিহ্নিতকরণ এবং চিকিৎসা করা হলে এই রোগটির ফলে মৃত্যু ও মস্তিষ্কের ক্ষতি এড়ানো সম্ভবমেনিনজাইটিস নির্ণয় করার জন্য নিম্নোক্ত পরীক্ষাগুলি করা অবশ্য প্রয়োজনীয়লাম্বার পাংচার ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিস নিশ্চিত নির্ণয়ের জন্য মস্তিষ্কসুষুম্না তরল সংগ্রহ করে মাইক্রোবিয়াল কালচার সিবিসি প্রোটিন ও গ্লুকোজ মাত্রা এবং সিরিআক্টিভ প্রোটিন (ইনফেকশন মার্কার) প্রভৃতি পরীক্ষা করা হয়শ্বেত রক্তকণিকার সংখ্যা বৃদ্ধিমাথার সিটি স্ক্যানমেনিনজাইটিসের ফুসকুড়ির পজিটিভ গ্লাস টেস্টমেনিনজাইটিসের চিকিৎসায় যে পদ্ধতিগুলি ব্যবহৃত হয়ব্যাকটেরিয়াল মেনিনজাইটিসে ইনট্রাভেনাস এন্টিবায়োটিক প্রয়োগ করা হয় যা শরীর থেকে সংক্রামক ব্যাকটেরিয়া অপসারণে সাহায্য করেফাঙ্গাল মেনিনজাইটিসের চিকিৎসায় এন্টিফাঙ্গাল ওষুধ ব্যবহার হয়ভাইরাল মেনিনজাইটিসে ইনট্রাভেনাস এন্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া যেতে পারে কিন্তু সাধারণত নিজে থেকেই এটির নিরাময় হয়ে যায়মেনিঙ্গকক্কাল ভ্যাকসিন এবং হিমোফিলাস ইনফ্লুয়েনজি টাইপ বি ভ্যাকসিনের মত কিছু টীকা মেনিনজাইটিস থেকে সুরক্ষা দিতে পারেসুষ্ঠ স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা এবং মেনিনজাইটিসের প্রাদুর্ভাব আছে এরকম অঞ্চলে যাওয়ার আগে প্রয়োজনীয় টীকা নেওয়ার মাধ্যমে এই রোগটিকে এড়ানো সম্ভব মেজ সিনড্রোম হল একপ্রকার ডিসটোনিয়া এক ধরণের স্নায়বিক রোগ যাতে চোয়ালজিভ এবং চোখের আশেপাশের পেশীর অনিচ্ছাকৃত সংকোচন বা বিচলন (ব্লেফারোস্প্যাজম) দেখতে পাওয়া যায় মেজ সিনড্রোমের প্রধান লক্ষণ হল ডিসটোনিয়া (ওরোম্যান্ডিবুলার) এবং ব্লেফারোস্প্যাজম এগুলিই এই রোগের মূল উপসর্গওরোম্যান্ডিবুলার ডিসটোনিয়া এই ধরণের ডিসটোনিয়ায় জিহ্বাসহ চোয়ালের পেশীগুলির অনিচ্ছাকৃত এবং প্রবল সংকোচন দেখতে পাওয়া যায় এর ফলে কথা বলা বা খাওয়ার মতো স্বাভাবিক কাজগুলি করা কষ্টকর হয়ে ওঠেব্লেফারোস্প্যাজম ব্লেফারোস্প্যাজম হল বারবার অনিচ্ছাকৃত ভাবে চোখের পাতা বন্ধ হয়ে যাওয়া এবং বাতাস ও উজ্জ্বল আলোর মত বাহ্যিক উদ্দীপনার কারণে চোখে অতিরিক্ত অস্বস্তি হয় এই সমস্যাটি ক্রমবর্ধমান যার ফলে পেশীর টান ও সংকোচনের হার বাড়তে থাকে এবং একসময় রোগীর পক্ষে চোখ খুলে রাখাও কষ্টকর হয়ে দাঁড়াতে পারে ব্লেফারোস্প্যাজম সাধারণত প্রথমে শুধু একটি চোখকে (ইউনিল্যাটেরাল) এবং পরে অপর চোখটিকে (বাইল্যাটেরাল) আক্রমণ করে মেজ সিনড্রোমের কোন নির্দিষ্ট কারণ নেই যে যে কারণ সম্ভবত এই রোগের জন্য দায়ী বলে মনে করা হয় সেগুলি হলবেসাল গ্যাংলিয়ার নেটওয়ার্কের ত্রুটি মস্তিষ্কের বেসাল গ্যাংলিয়া নামক অঞ্চলের যে কোষগুলি চোখের পলক ফেলাসহ বিভিন্ন অনৈচ্ছিক কাজ নিয়ন্ত্রণ করে তাদের মধ্যে ত্রুটি দেখা দিলে মেজ সিনড্রোম হতে পারেপার্শ্বপ্রতিক্রিয়া পারকিনসন্স রোগের জন্য ব্যবহৃত কিছু ওষুধের নির্দিষ্ট পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে মেজ সিনড্রোম বিকশিত হতে পারে মেজ সিনড্রোম অত্যন্ত বিরল একটি রোগ হওয়ার ফলে এর কোন নির্দিষ্ট নির্ণায়ক নেই তবে একজন স্নায়ুবিশেষজ্ঞ রোগীর শরীরে উপস্থিত উপসর্গ বিশ্লেষণ করে রোগটিকে মেজ সিনড্রোম হিসাবে চিহ্নিত করতে পারেনএন্টিস্প্যাজম বা সংকোচনরোধী ওষুধের ব্যবহার এই সমস্যায় সাহায্য করতে পারেক্লোনাজিপাম ট্রাইহেক্সিফেনীডাইল ডায়াজীপাম এবং ব্যাকলোফেন প্রভৃতি ওষুধ মেজ সিনড্রোম বা ব্লেফারোস্প্যাজমের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হয় কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এদের ফলাফল ক্ষণস্থায়ী বা অসন্তোষজনক ফুড এন্ড ড্রাগ এডমিনিস্ট্রেশন (এফডিএ)এর একটি সাম্প্রতিক গবেষণাতে ব্লেফারোস্প্যাজমের চিকিৎসায় বটুলীনম নামক ওষুধের কথা বলা হয়েছে যেটি এই সমস্যার সবথেকে প্রচলিত ওষুধ হিসাবে ব্যবহৃত হয় যদিও কিছু রোগীর ক্ষেত্রে বোটক্স চিকিৎসায় আশানুরূপ উন্নতি দেখা যায়না কুষ্ঠ বা হ্যানসেন রোগটি ম্যাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপরের কারণে সৃষ্ট ত্বক এবং স্নায়ুর সংক্রমণ বিশেষ এই অবস্থায় ত্বক শ্লৈষ্মিক ঝিল্লি পেরিফেরাল স্নায়ু চোখ এবং শ্বাসযন্ত্র প্রভাবিত হয়ওয়ার্ল্ড হেলথ অর্গানাইজেশন (ডাব্লুএইচও) অনুসারে কুষ্ঠ সম্ভবত শ্বাসযন্ত্রের মাধ্যমে এবং পোকামাকড়ের মাধ্যমে ছড়ায় আবার অন্যদিকে বেশীরভাগ মানুষ মনে করেন সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে ঘনিষ্ঠ যোগাযোগের মাধমেও ছড়ায়স্কিন স্মীয়ার (ত্বকের ক্ষত অংশ থেকে নমুনা নেওয়া হয়) পরীক্ষার ফলের উপর ভিত্তি করে নিম্নলিখিত অবস্থাগুলির শ্রেণীবদ্ধ করা হলপাউসিবেসিলারি কুষ্ঠ (পিবি) নেতিবাচক স্মীয়ারমালটিবেসিলারি কুষ্ঠ (এমবি) ইতিবাচক স্মীয়ার এই অবস্থার উপসর্গগুলি স্পষ্ট দেখা যায় যা এই রোগকে সহজে সনাক্ত করতে সাহায্য করেফ্যাকাশে দাগ বা ছোপযুক্ত চামড়া মূলত মসৃণঅসার ও বিবর্ণ ক্ষত যা পার্শ্ববর্তী এলাকার তুলনায় হালকা বর্ণেরচামড়ার উপর ক্ষুদ্র উঁচু ফোঁড়া জাতীয় বস্তুশুষ্ক ও শক্ত চামড়াপায়ের পাতার নিচের অংশে ঘামুখের বা কানের কিছু অংশ উঁচু হয়ে ফুলে যাওয়াচোখের পাতা ও ভ্রূ র সম্পূর্ণ বা আংশিক ক্ষতি বা নষ্ট হয়ে যাওয়াঅন্যান্য উপসর্গের মধ্যে রয়েছেসংক্রামিত জায়গায় অসারভাব ও ঘাম হওয়াপঙ্গু হয়ে যাওয়াপেশীতে দুর্বলতানার্ভের বা স্নায়ুর বৃদ্ধি বিশেষত কনুই ও হাঁটুর চারপাশেমুখের নার্ভে বা স্নায়ুতে প্রভাব পরার দরুন অন্ধত্বপরবর্তী পর্যায়ে এটির ফল যা হতে পারেপা ও হাত অসমর্থ হয়ে যাওয়াআঙ্গুল ও পা ছোট হয়ে যাওয়া এবং শুকিয়ে যাওয়াপায়ের আলসার বা ঘা ভাল না হওয়ানাক বিকৃত হয়ে যাওয়াচামড়ায় জ্বালাভাব অনূভব করাব্যথাযুক্ত বা সংবেদনশীল স্নায়ু কুষ্ঠরোগটি ম্যাইকোব্যাকটেরিয়াম লেপরে নামক ব্যাকটেরিয়ার কারণে হয় যা সাধারণত আমাদের পরিবেশে থাকে জিনগত পরিবর্তন এবং বৈচিত্র্য কুষ্ঠরোগের সম্ভাবনা বৃদ্ধি করে একইভাবে প্রতিরক্ষা পদ্ধতিতে পরিবর্তন এবং প্রদাহের ফলে এটি হওয়ার সম্ভাবনা বৃদ্ধি পায় রোগটি দীর্ঘস্থায়ী সংক্রামিত ব্যক্তির সাথে দীর্ঘস্থায়ী যোগাযোগের কারণে বা বাতাসে নিঃশ্বাস নেওয়ার সময় নাসারন্দ্রের মাধ্যমে প্রবেশ করা ব্যাকটেরিয়ার কারনেও ছড়াতে পারে ইন্টারস্টিসিয়াল সিস্টাইটিস যা ব্লাডার পেইন সিন্ড্রোম বা মূত্রাশয়ের ব্যথার উপসর্গ হিসাবেও পরিচিত এটি মূত্রাশয়ের একটি তীব্র প্রদাহজনক অবস্থা ইন্টারস্টিসিয়াল সিস্টাইটিসের প্রভাবে মূত্রাশয়ের এলাকায় ব্যথা যন্ত্রণা ও চাপের সৃষ্টি হয় পুরুষের তুলনায় মহিলাদের মধ্যে এই সিনড্রোমটি বেশি সংঘটিত হয় যেহেতু মূত্রাশয় উদ্দিপ্ত এবং অতিষ্ট হয়ে পড়ে তাই মূত্রাশয়টি সংবেদনশীল হয়ে যায় উপরন্তু মূত্রাশয়ের বেষ্টনটি ফুলে যেতে পারে অথবা রক্তপাত হতে পারে উপসর্গগুলি খুব হালকা থেকে কম হতে পারে কিছু রোগীর ক্ষেত্রে উপসর্গগুলি বিনা চিকিৎসাতেই নিজে থেকে ভালো হয় যেতে পারেপ্রস্রাবের পথ বর্ধিত হওয়া (আরও পড়ুন বারবার প্রস্রাবের কারণ)প্রস্রাব করার জরুরী অবস্থা অনুভব করাপ্রস্রাবের লিকিং প্রতিবার স্বল্প পরিমান মূত্রত্যাগ করামহিলাদের যৌনাঙ্গে ব্যথা যৌনক্রিয়ার সময় ব্যথা হওয়াপেটের নিচে ব্যথা ঊরু কোমরের নিচে যৌনাঙ্গে বা পেনিলে ব্যথা হওয়াহরমোনাল পরিবর্তন মানসিক চাপ মসলাযুক্ত খাবার খাওয়া এবং অ্যালকোহলযুক্ত পানীয়গুলির জন্য ইন্টারস্টিসিয়াল সিস্টাইটিসের উপসর্গগুলি আরো খারাপ হয় ইন্টারস্টিসিয়াল সিস্টাইটিসের মূল কারণ এখনো চিহ্নিত করা যায়নি তবে নিম্নলিখিত মেডিকেল উপসর্গগুলির সাথে এটি সম্পর্কিত হতে পারেঅটোইমিউন রোগ যেমন ইনফ্লেমেটরি বাওয়েল ডিজিজ সিস্টেমিক লুপাস এরিথিওসাস এবং এটোপিক অ্যালার্জিরক্তবাহী শিরার রোগ যেমন সংবহনতান্ত্রিক ক্ষতের কারণে রক্তনালির ভঙ্গুরতামূত্রে ক্যালসিয়াম ফসফেটের মতো অস্বাভাবিক উপাদানের উপস্থিতিইউরিয়া যুক্ত ব্যাকটেরিয়ার দ্বারা ঘটিত অনিশ্চিত সংক্রমণ যা ব্যাকটেরিয়াল সংক্রমণও হতে পারে ইন্টারস্টিসিয়াল সিস্টাইটিসের নির্ণয়ের জন্য কোনও নির্দিষ্ট পরীক্ষা নেই তবুও নিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি এটির নির্ণয়ের জন্য করা হয়প্রস্রাবের নমুনা পরীক্ষা ও অনুশীলনইউরেথ্রা এবং মূত্রাশয়ের বেষ্টনের বায়োপসিসিস্টোস্কোপিইন্টারস্টিসিয়াল সিস্টাইটিস সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করা যায় না তবে নিম্নলিখিত চিকিৎসাগুলি এর উপসর্গগুলিকে হ্রাস করতে পারে একটি ড্রাগ সলিউশনের দ্বারা মূত্রাশয়ের ভিতরকে স্নান করানোমূত্রাশয়ের ইনফ্লেটিংওষুধখাদ্যাভ্যাসচিন্তা কমানোশারীরিক চিকিৎসাবৈদ্যুতিক পদ্ধতি দ্বারা স্নায়ুর উদ্দীপনামূত্রাশয়ের ব্যাপারে প্রশিক্ষণঅস্ত্রোপচার হাইপোথ্যালামাস (মস্তিষ্কের একটি অংশ) দ্বারা অ্যান্টি ডিউরেটিক হরমোন (এডিএইচ) সৃষ্ট হয় এবং পিটুইটারি গ্রন্থি (মস্তিষ্কের গোড়াতে অবস্থিত) দ্বারা মুক্ত হয় এডিএইচ কিডনির দ্বারা মূত্রের সঙ্গে যে জল শরীরের বাইরে বেরিয়ে যায় সেই জলের পরিমাণকে নিয়ন্ত্রণ করে ইন অ্যাপ্রোপ্রিয়েট অ্যান্টি ডিউরেটিক হরমোন সিক্রেশন (এসআইএডিএইচ) হল এমন একটি উপসর্গ যা প্রচুর পরিমাণে বা মাত্রায় অ্যান্টি ডিউরেটিক হরমোন (এডিএইচ) শরীরে ধরে রাখে এই রোগ শরীরের মধ্যে অতিরিক্ত জল ধরে রাখে এসআইএডিএইচএর সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছেমাথা ব্যথাবমি বমি ভাববমিমানসিক পরিবর্তন যার মধ্যে রয়েছেভেবাচেকাস্মৃতিশক্তি নিয়ে সমস্যা (বিস্তারিত পড়ুন স্মৃতিশক্তি হারানোর চিকিৎসা)শরীরের ভারসাম্য বজায় রাখতে না পাড়ার কারণে পড়ে যাওয়ামারাত্মতার ক্ষেত্রে এটির কারণে খিঁচুনি বা কোমা পর্যন্ত হতে পারে যে কারণগুলি শরীরে এডিএইচএর মাত্রা বাড়িয়ে তোলে তা এসআইএডিএইচ সৃষ্টি করতে পারে এই কারণগুলির মধ্যে হলওষুধ যার মধ্যে এইগুলির জন্য ড্রাগ রয়েছেহরমোনের ওষুধ (ভ্যাসোপ্রেসিন বা এডিএইচ )টাইপ 2 ডায়াবেটিসখিঁচুনিঅ্যন্টিডিপ্রেসেন্টসরক্ত চাপ বা হার্টের রোগ সংক্রান্তক্যান্সারসাধারণ অ্যানাসথেসিয়ার মধ্যে অ্যানাসথেসিয়া বা অপারেশনমস্তিষ্কের রোগ যার মধ্যে রয়েছেস্ট্রোকআঘাতসংক্রমণফুসফুসের রোগ যার মধ্যে রয়েছেক্রনিক সংক্রমণযক্ষ্মারোগনিউমোনিয়াক্যান্সারমানসিক রোগহাইপোথ্যালামাস বা পিটুইটারির রোগনিম্নলিখিত অঙ্গ/শরীরে ক্যান্সারলিউকেমিয়া (রক্তের ক্যান্সার)অগ্ন্যাশয়ক্ষুদ্রান্ত্রমস্তিষ্ক উপসর্গগুলির কারণ খোঁজার জন্য ডাক্তার রোগীর সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করবেন অন্তর্নিহিত পরীক্ষাগুলি অনুসরণ করুনসোডিয়ামের মাত্রা পরিমাপের জন্য রক্ত এবং প্রস্রাব পরীক্ষারক্ত এবং প্রস্রাবের অসমোলালিটি মূল্যায়ন করার জন্য পরীক্ষাবিস্তীর্ণ বিপাকীয় প্যানেল (কম্প্রিহেনসিভ মেটাবলিক প্যানেল) (কিডনি এবং লিভারের কাজ অ্যাসিড/বেসের ভারসাম্য ইলেক্ট্রোলাইট এবং রক্ত শর্করা পরিমাপের পরীক্ষা)এসআইএডির কারণগুলির উপর নির্ভর করে তার চিকিৎসার মধ্যে রয়েছে কোনোরকম তরল পদার্থ পান করার উপর নিষেধাজ্ঞা আপনি কত পরিমান তরল পদার্থ পান করতে পারবেন তা ডাক্তার সিদ্ধান্ত নেবেনকিডনির উপর এডিএইচএর প্রভাব আটকাতে খাবার বা শিরায় প্রদানের জন্য ওষুধ নির্ধারণ করা হতে পারে যা কিডনির দ্বারা অতিরিক্ত জল বার করতে সাহায্য করবেরোগের মূল কারণের চিকিৎসা এই ভাবে হবেযদি টিউমার হয়ে থাকে তাহলে অপারেশনের প্রয়োজনযে ওষুধ অস্বাভাবিকভাবে এডিএইচ উৎপাদন করছে তার ডোজ বদলে দেওয়া বা ওষুধটা বদলে দেওয়া এনসেফালোপ্যাথি কথাটি মস্তিষ্কের কার্যকারিতায় বিশৃঙ্খলা অথবা ক্ষয় পাওয়াকে বোঝায় যার ফলে মানসিক বিভ্রান্তি বা স্মৃতিশক্তি লোপ পায় হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথিতে যকৃতের দুরারোগ্য অবস্থা (দীর্ঘকালীন যকৃতের অসুখ) বা যকৃৎ বিকল হয়ে যাওয়ার ফলে মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা হ্রাস পায় হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি বেশিরভাগ সেই সমস্ত ব্যক্তিদের হতে দেখা যায় যাঁদের লিভার সিরোসিস (যকৃৎ দীর্ঘদিন দিন ধরে ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার ফলে যকৃতের ক্ষত আর সারে না এবং যকৃতের কার্যকারিতা হ্রাস পায়) অসুখ রয়েছে হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথির সাধারন উপসর্গগুলো নিম্নে উল্লেখ করা হলোস্মৃতিলোপমনোযোগের সমস্য়াচিড়চিড়েভাব বৃদ্ধিবিভ্রান্তিসমন্বয়ে সমস্যাসতর্কতা হ্রাসঅকারণে মেজাজের পরিবর্তনসময় এবং স্থান সম্পর্কে দুর্বল ধারণাউপরোক্ত উপসর্গগুলোর সঙ্গে অন্যান্য স্নায়ুবিক উপসর্গ দেখা দিতে পারেতড়কা বা খিঁচুনিবাচনভঙ্গির সমস্যা (অপমানজনক মন্তব্য)থরথর করে কাঁপাঅনৈচ্ছিকভাবে ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠাঅনৈচ্ছিকভাবে চোখের নড়াচড়াপেশীর দুর্বলতাযেহেতু যকৃৎ প্রচণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয় সেই কারণে কোনও ব্যক্তি যকৃৎএর সমস্যার অন্যান্য উপসর্গও উপলব্ধি করতে পারেন হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথির প্রাথমিক কারণ হলো দীর্ঘদিন ধরে চলা যকৃতের বিকলতা এটি বেশিরভাগ সেই ব্যক্তিদের মধ্যে দেখা যায় যাঁদের লিভার সিরোসিস আছে বা যাঁদের দীর্ঘদিন ধরে অতিরিক্ত মদ্যপানের ইতিহাস আছে অথবা যাঁরা হেপাটাইটিস বি বা সি দ্বারা সংক্রমিত এইসব সমস্যার ফলে যকৃৎ শরীর থেকে টক্সিন বার করার মতো তার স্বাভাবিক কাজকর্ম চালাতে অক্ষম হয়ে পড়ে রক্তে এইসব টক্সিনের মাত্রা বাড়তে থাকলে মস্তিষ্কের ক্রিয়াকলাপে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে যার ফলে মানসিক কার্যবিধিতে পরিবর্তন আসে এবং স্নায়বিক মনোরোগের উপসর্গ দেখা দেয়হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি বংশগত অসুখ নয় হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি রোগ নির্ণয়ের জন্য চিকিৎসক উপসর্গগুলি এবং রোগীর সম্পূর্ণ চিকিৎসা জনিত ইতিহাসের জেনে নেন যাতে অন্যান্য কারণের সম্ভাবনা দূর হয় রোগ নির্ণয়ের অন্যান্য পরীক্ষাগুলি হলোরক্তপরীক্ষা করা হয় টক্সিনের উপস্থিতির যাচাই যাচাই এবং যকৃতের স্বাস্থ্য মূল্যায়নের জন্যস্পাইনাল ট্যাপ টেস্ট (লাম্বার পাংচার) পরীক্ষা করা হয় সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (সিএসএফ)এ ব্যাকটেরিয়াল ও ভাইরাল সংক্রমণ সনাক্ত করার জন্যকম্পিউটেড টোমোগ্রাফি (সিটি) স্ক্যান এবং ম্যাগনেটিক রেসোন্যান্স ইমেজিং (এমআরআই) স্ক্যানের মতো ইমেজিং স্টাডি মস্তিষ্কের সুস্থতা মূল্যায়ন করতেহেপাটিক এনসেফালোপ্যাথির চিকিৎসা ওষুধ ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে করা হয়অনৈচ্ছিকভাবে পেশীর নড়াচড়া ও রক্তে টক্সিনের মাত্রা কম করতে ওষুধ দেওয়া হয় হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি সারানো যায় এবং সঠিক মেডিক্যাল কাউন্সিলিং এর সাহায্যে পরিবর্তন সম্ভব যাইহোক যেহেতু হেপাটিক এনসেফালোপ্যাথি প্রাথমিকভাবে তাঁদেরই হয় যাঁদের যকৃতের দীর্ঘমেয়াদী ক্ষতির সমস্যা রয়েছে তাই এই রোগ আবার হতে পারে পুনরায় এই রোগ হওয়া আটকাতে চিকিৎসক প্রোফাইল্যাক্টিক চিকিৎসা করানোর পরামর্শ দিতে পারেন মাথা স্ক্যাল্প বা মস্তিষ্কের আঘাতকে মাথায় আঘাত হিসাবে উল্লেখ করা হয় মাথার উপর একটি হালকা আচমকা আঘাত লাগা থেকে জোরে ধাক্কা লাগার একটি তীব্র গঠন অথবা একটি মাথার হাড়ের ফেটে যাওয়া পর্যন্ত মাথায় আঘাত হতে পারে আঘাতের প্রভাবের উপর নির্ভর করে একজন ব্যক্তি উপসর্গগুলির বিভিন্ন মাত্রার সাথে দেখা দিতে পারে যা হালকা মাঝারি বা গুরুতর হতে পারেহালকা আঘাতমাথার উপরে আচমকা ঠুকে যাওয়া বা কালশিটেস্ক্যাল্পের উপর কেটে যাওয়ামাথা ব্যথাআলোকাতঙ্ক রোগ (আলোতে সংবেদনশীলতা)বমি বমি ভাববিভ্রান্তিমাথা হালকা অনুভব করাঘুমের প্যাটার্নের পরিবর্তনঝাপসা দেখামাঝারি আঘাতকিছুক্ষনের জন্য চেতনা হারানোমাথায় প্রচন্ড ব্যথাবমি বমি ভাব ও বমি করাফ্যাকাশে ত্বকখিটখিটে ভাব বা আচরণগত পরিবর্তনউন্মুক্ত ক্ষতগুরুতর আঘাতজ্ঞান হারানোতন্দ্রালু ভাবসিজার্সঅসংলগ্ন কথাবিস্তারিত বা স্থির চক্ষুতারাবাইরের বিষয়ে তীক্ষ্ণ মাথাপ্রগতিহীন অবস্থা মাথায় আঘাতের কারণ বিভিন্ন হয় এখানে শিশু ও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে কারণের বিভিন্ন প্রস্ত রয়েছে শিশুদের ক্ষেত্রে একটি উঁচু থেকে পরে গিয়ে মারামারি বা খেলাধুলা করতে গিয়ে এটা হতে পারে যদিও প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে রাস্তায় যানবাহন দুর্ঘটনা (গাড়িতে দুর্ঘটনা) শারীরিক নির্যাতন বা হিংসা পড়ে গিয়ে বা খেলাধুলা করতে গিয়ে আঘাতের কারণে হতে পারে গ্লাসগো কোমা স্কেলের (জিসিএস) সাথে একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ ক্লিনিকাল পরীক্ষা মাথার আঘাত নির্ণয় করতে সাহায্য করে জিসিএসের কম স্কোর গভীর আঘাত এবং তার বিপরীতকে নির্দেশ করে কখনও কখনও আচ্ছন্ন অবস্থার কারণে এটির মেডিকাল ইতিহাস পাওয়া কঠিন নির্দিষ্ট পরিক্ষাগুলি মস্তিষ্কে কোষগুলির ক্ষতি এবং আঘাতের পরিমাণ পরীক্ষা করার জন্য বাধ্যতামূলক পরিবেষ্টন করা পরীক্ষাগুলি হলকম্পিউটেড টোমোগ্রাফি (সিটি) স্ক্যান এটি মাথার খুলিতে ফাটল রক্তপাত এবং টিস্যুর ফোলা নিরীক্ষণ করতে সাহায্য করেম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) স্ক্যান সিটি স্ক্যানের থেকেও এটি অধিক গুরুত্বপূর্ণ এবং অধিক যথাযথহালকা আঘাতের জন্য পর্যবেক্ষণ অথবা ব্যাথার জন্য সাধারণ বেদনানাশকের (বারবার বরফের প্যাক ব্যবহারের সাথে) ব্যবহার প্রয়োজন যদিও মাঝারি ও মারাত্মক আঘাতের জন্য সাধারণ ওষুধ থেকে সার্জারি বা কখনও কখনও জরুরী ওয়ার্ডে ভর্তি করে ক্ষণিকের চিকিৎসার প্রয়োজন হয়মাথায় আঘাতের জন্য চিকিৎসাগুলি হলএন্টি সিজার্স মেডিকেশন সিজার্স মাথায় আঘাতের একটি প্রচলিত উপসর্গ এবং এটি মস্তিষ্কের ক্ষতি করতে পারে এক্ষেত্রে এন্টিসিজার্স ওষুধগুলি খুবই সাহায্য করেডিউরেটিক্স মস্তিষ্কের চারপাশ ফুলে যাওয়ার কারণে কিছু ধরনের মাথায় আঘাত হয় ডিউরেটিক্সের ব্যবহারে ফোলা কমে এবং চাপের উপসর্গগুলি উপশম করতে সহায়তা করেকোমা ইনডিউসিং ড্রাগস যখন মস্তিষ্ক নিজে থেকে আরোগ্যলাভের চেষ্টা করে তখন এটি অতিরিক্ত অক্সিজেনের ব্যবহার শুরু করে কিন্তু রক্তবাহগুলি প্রভাবিত থাকার কারণে এগুলি পর্যাপ্ত পরিমানে অক্সিজেন পায় না এবং এটি আঘাতকে আরো বাড়িয়ে তোলে এবং মস্তিষ্কের কোষগুলির মৃত্যু ঘটায় তাই অধিকতর আঘাতকে রোধ করার জন্য কোমাইনডিউসিং ওষুধগুলি ব্যবহার করে সাময়িকভাবে মস্তিষ্কের কোষগুলির কার্যকারিতা হ্রাস করা হয়মাথায় আঘাতের অস্ত্রোপচারগত চিকিৎসা হলমাথার খুলির ফাটলের মেরামত করারক্তাক্ত মস্তিষ্কের ধমনীগুলির সেলাই করামস্তিষ্কের চাপ কমানোর জন্য মাথার খুলিতে ফাঁক তৈরি করাঅস্ত্রোপচার ও ওষুধ ছাড়া মস্তিষ্কের ক্ষতির কারণে আক্রান্ত মস্তিষ্ক ও অঙ্গগুলির কার্যকারিতা উন্নত করার জন্য পুনর্বাসনের প্রয়োজন পুনর্বাসনের মধ্যে রয়েছে ফিজিওথেরাপি অকুপেশনাল থেরাপি কাউন্সেলিং এবং রিক্রিয়েশনাল থেরাপি কম্পন হল কোনো বিশেষ পেশীসমূহের অনৈচ্ছিক নিয়মিত নড়াচড়া হাত কাঁপা হল হাতের (কব্জি আঙ্গুল বুড়ো আঙ্গুল) পেশীসমূহের অনৈচ্ছিক নড়াচড়া যাকে কম্পমান হাতও বলা হয় এই অবস্থাটি বয়স্ক মানুষের মধ্যে তুলনামূলকভাবে বেশি সাধারণ এবং এতে তাঁদের রোজের কাজ করতে খুবই অসুবিধা হয় এটা প্রাণঘাতী অবস্থা নয় কিন্তু এটা মস্তিষ্কের কোষে ঘটমান একটি পতন প্রক্রিয়ার দিকে নির্দেশ করতে পারে হাত কাঁপার উপসর্গগুলো খুবই সাধারণ এবং হাতের অনৈচ্ছিক নড়াচড়া স্পষ্টরূপে দেখা যায় কিন্তু কখনো কখনো হাত কাঁপা কিছু উপসর্গের সাথেও জড়িয়ে থাকে যেমনধীরে ধীরে একপার্শ্বিক (একদিকে) কাঁপুনি শুরু হয় যেটা অন্য হাতেও ছড়িয়ে পড়ে (দুটো হাতকেই প্রভাবিত করে)হাতের নড়াচড়ার সাথে কাঁপুনির বৃদ্ধি হতে থাকেমানসিক চাপ ক্লান্তি উত্তেজক পদার্থের ব্যবহার ইত্যাদির কারণে কাঁপুনির বৃদ্ধি হয়অ্যাটাক্সিয়ার সাধারণ উপসর্গগুলি (অস্থির গেইট)উপসর্গগুলি সমস্যাজনক হয়ে ওঠে যখন একজন রোজের কাজ করতে অসুবিধা বোধ করেন যেমন কাপড় পরা গ্লাস বা কাপ ধরা খাওয়া বা দাড়ি কামানো এমন কি লিখতেও অসুবিধা হয় যেটার নৈতিক শাখাবিন্যাস থাকতে পারে হাত কাঁপা সাধারণত অপরিহার্য কাঁপুনি (স্নায়ুতন্ত্রের পদ্ধতির রোগ) বা পার্কিনসন্স অসুখের কারণে হয় উভয়ই জিনের রোগ যা জিনের পরিবর্তনের জন্য ঘটেহাত কাঁপার অন্যান্য কারণগুলোর মধ্যে রয়েছেহাইপারথাইরয়েডিজমমাল্টিপল স্ক্লেরোসিসডায়স্টোনিয়াবেশী বয়সপেরিফেরাল নিউরোপ্যাথিস্ট্রোক পারিবারিক ইতিহাসের সাথে একটা বিশদ মেডিকেল ইতিহাস এবং একটা সঠিক চিকিৎসাগত পরীক্ষা হাত কাঁপার নির্ণয় নিশ্চিত করে কিছু রক্তপরীক্ষা যেমন সম্পূর্ণ রক্ত গণনা (সিবিসি) ভিটামিন বি 12 এর মাত্রা এবং রুটিন অনুসন্ধান যেমন মস্তিষ্কের সিটি স্ক্যান করা যেতে পারে যা কাঁপুনির জন্য দায়ী অন্যান্য বিষয়গুলোকে বের করেহাত কাঁপার চিকিৎসা পদ্ধতির মধ্যে রয়েছেহাতের কাঁপুনি সম্পূর্ণ ঠিক হয় না কিন্তু কিছু চিকিৎসা পদ্ধতি আছে যেগুলো উপসর্গগুলোকে কম করতে সাহায্য করতে পারেওষুধ খাবার ওষুধগুলি যেমন বিটাব্লকারস (উদাহরনস্বরূপ প্রোপ্রানোলোল এবং প্রিমিডোন) অ্যান্টিসিজার ওষুধ বোটোক্স এবং দুশ্চিন্তা কমানোর ওষুধ দেওয়া যেতে পারে যা কাঁপুনির তীব্রতা কম করতে সাহায্য করেঅস্ত্রোপচারগত চিকিৎসা মস্তিষ্কের গভীর উত্তেজনা এবং থ্যালামোটমি কাঁপুনি কমাতে সাহায্য করেশারীরিক থেরাপি ভর ব্যবহার করা কব্জিতে স্ট্র্যাপ পরা (কব্জির ভর) এবং চাপমুক্ত বলের ব্যায়ামও কাঁপুনির তীব্রতা কম করতে সাহায্য করে ফ্রেডরিক এটাক্সিয়া হল একটি জেনেটিক ব্যাধি যা মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কর্ডকে প্রভাবিত করে এটি একটি ব্যক্তির সঠিকভাবে হাঁটার ক্ষমতা দুর্বল করে এবং যা বয়সের সঙ্গে আরো খারাপ হয়ে ওঠেএটি জেনেটিক পরিবর্তনের দ্বারা ঘটিত এক বিরল ব্যাধি এবং এর নামকরণ এক জার্মান চিকিৎসকের নামে করা হয় যিনি এই রোগের প্রথম আবিষ্কার করেন ফ্রেডরিক এটাক্সিয়া আগের বা পরের বছরগুলিতে শুরু হতে পারে আগেসূত্রপাত হওয়া ফ্রেডরিক এটাক্সিয়া 5 থেকে 10 বছর বয়েসের মধ্যে উপসর্গগুলি দেখাতে শুরু করে যেখানে পরেসূত্রপাত হওয়া ফ্রেডরিক এটাক্সিয়া 30এর শুরুর দিকে আরম্ভ হতে পারেপ্রাথমিক উপসর্গ হল হাঁটতে অসুবিধা এটি পায়ের পাতার পেশীর দুর্বলতা এবং অসাড়তার দ্বারা সংসর্গী হতে পারেএকজন রোগী দৃষ্টি হারাতে পারেন বা দৃষ্টি চলাচলে অসুবিধাও অনুভব করতে পারেনএই রোগের অন্যান্য উপসর্গগুলি হল বক্তৃতা এবং শ্রবণে সমস্যামেরুদণ্ডের গঠনে একটি অস্বাভাবিক বক্রতা এবং পায়ের পাতায় অঙ্গবিকৃতি দেখা যায়এই অবস্থায় হৃদয় খুব সাধারণভাবে আক্রান্ত হয় হৃদপিন্ডসম্বন্ধীয় পেশীতে দুর্বলতা দেখা যায় ফ্রেডরিক এটাক্সিয়া এফএক্সএন (FXN) নামক একটি বিশেষ জিনের পরিবর্তনের কারণে ঘটেএই জিনের ডিএনএ (DNA) এক অস্বাভাবিক ক্রম দেখায় যার ফলে এই রোগ হয়এটি একটি অটোজোমাল রিসেসিভ ব্যাধি যার অর্থ বাবামা উভয়ই যদি ত্রুটিযুক্ত জিন বহন করে তবে শিশুটির এই রোগ হবেত্রুটিযুক্ত জিন শুধুমাত্র পিতামাতার মধ্যে যেকোন একজনের কাছ থেকে উত্তরাধিকারী হলে শিশু এই রোগের বাহক হয়ে ওঠে এবং সাধারণত এটির কোনো উপসর্গ দেখায় না উপসর্গগুলির বিস্তারিত তথ্য গ্রহণ করার পর ডাক্তার নিউরোমাস্কুলার সিস্টেমের শারীরিক পরীক্ষা পরিচালনা করেনএমআরআই সিটি স্ক্যান বা এক্সরের দ্বারা মস্তিষ্ক এবং স্পাইনাল কর্ড পরীক্ষা করা হয়অন্যান্য পরীক্ষাগুলির মধ্যে রয়েছে পেশীর ক্রিয়া পরীক্ষা করার জন্য একটি ইলেক্ট্রোমিওগ্রাম এবং একটি ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রামের দ্বারা হৃদয়ের কার্যকলাপ পরীক্ষা করা এবং গ্লুকোজ ও অন্যান্য পরিমিতিগুলির জন্য রক্ত পরীক্ষাত্রুটিপূর্ণ জিনের জন্য জেনেটিক পরীক্ষাগুলির মাধ্যমে চূড়ান্ত নির্ণয় নেওয়া হয়ফ্রেডরিক এটাক্সিয়ায় চিকিৎসার উদ্দেশ্য হল রোগীকে উপসর্গগুলির মোকাবিলা করতে সাহায্য করা এবং স্বাধীনভাবে বাঁচতে সহায়তা করা যেহেতু এটি সম্পূর্ণভাবে নিরাময় হয় নাচিকিৎসা কৌশলের অন্তর্ভুক্ত হল শারীরিক পরীক্ষা পেশীর ব্যায়াম এবং হাঁটার উপকরণবক্তৃতা সমস্যার জন্য স্পিচ থেরাপি বক্তব্য আদানপ্রদান উন্নত করতে সহায়ক করতে পারেবাঁকা মেরুদন্ড বা বিকৃত পায়ের পাতার ক্ষেত্রে অর্থোপেডিক যন্ত্রপাতির সুপারিশ করা হতে পারেহৃদরোগ নিয়ন্ত্রণে রাখতে ওষুধ বা চিকিৎসা দেওয়া হতে পারে তবে বয়েসের সাথে অবস্থাটি আরও খারাপ হয় যখন আপনি স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি বার প্রস্রাব করার প্রয়োজন অনুভব করেন তখন এটি একটি সংক্রমণ বা একটি কিডনিতে পাথরের মত অন্তর্নিহিত রোগের কারণে হতে পারেবার বার প্রস্রাব হওয়া অনেক যুক্ত সমস্যার করণ হতে পারে এবং একটি মানুষের রোজকার জীবনকে বিঘ্নিত করতে পারে সাধারণভাবে বেশীরভাগ মানুষ 24 ঘন্টায় 7 থেকে 8 বার প্রস্রাব করেন যদিও এটাকে সাধারণকরণ করা যায় না তবে এর থেকে বেশী হলে তা একটি সমস্যা বলে বিবেচিত হতে পারেএটা রাতে আরো বেশী হওয়ার সম্ভাবনা থাকতে পারে আপনার নিয়মিত ঘুমের সূচিতে ব্যাঘাত ঘটাতে পারে এবং এর ফলে পুরো দিন ঝিমুনি ও ঘুমঘুম ভাব লাগতে পারে· বার বার প্রস্রাব হওয়ার কারণে সাধারণত পিপাসা বেড়ে যায়কিছু ব্যতিক্রমী উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছেজ্বর এবং ঠান্ডা লাগাপিঠে ব্যথা ও পেটে ব্যথাপ্রস্রাবের সময় অস্বাভাবিক নির্গমন বা স্রাব হওয়াবমি বমি ভাব বার বার প্রস্রাব হওয়া কোনো স্বাস্থ্যগত পরিবর্তনের জন্য হতে পারে যেমন অত্যধিক তরল পদার্থ গ্রহণ করা বা অত্যধিক ঠান্ডা অবস্থাডায়াবেটিস মেলিটাস বা ডায়াবেটিস ইনসিপিডাসের রোগীরাও বার বার প্রস্রাব হওয়ায় ভোগেনইউরিনারি এলাকায় সংক্রমণ এবং ওভারঅ্যাক্টিভ ব্লাডারের উপসর্গগুলির মধ্যে একটি হল বার বার প্রস্রাব হওয়ামহিলাদের মধ্যে মেনোপজ বা ইস্ট্রোজেনের অসাম্যের জন্যও বার বার প্রস্রাব করার তাড়না হতে পারেইউরিনারি ব্লাডারে পাথর হওয়াও বার বার প্রস্রাব হওয়ার আরেকটা কারণকখনও কখনও অ্যান্টিএপিলেপ্টিক্সের মত ওষুধগুলোও এই উপসর্গের কারণ হতে পারে যখন আপনি বার বার প্রস্রাব হওয়ার কথা বলবেন আপনার চিকিৎসক আরম্ভের ইতিহাস ও উপসর্গের সময়সীমা জানবেন যদি আপনার বার বার প্রস্রাব হওয়া ছাড়া অন্য কোনো সমস্যা থাকে তাহলে আপনার চিকিৎসককে অবশ্যই সেটা জানানো উচিতপ্রস্রাবে রক্ত গ্লুকোজ প্রোটিন বা অন্য অস্বাভাবিকতা আছে কিনা দেখার জন্য ভোরবেলার প্রস্রাব সাধারণত ল্যাবে পরীক্ষা করা হয়প্রস্রাবের পরে ব্লাডার সম্পূর্ণ খালি হচ্ছে কিনা দেখার জন্য ব্লাডারের আল্ট্রাসাউন্ড করা হয় পেলভিসের সিটি স্ক্যান বা এক্সরেও করা হয়যদি চিকিৎসক ডায়াবেটিস মত অন্য কোনো অসুখ সন্দেহ করেন তাহলে প্রাসঙ্গিক পরীক্ষা ও রক্তপরীক্ষা করতে পরামর্শ দেনবার বার প্রস্রাব হওয়ার জন্য চিকিৎসার প্রকারতা উপসর্গের কারণের উপর নির্ভর করেযদি বার বার প্রস্রাব হওয়া কোনো সংক্রমণের কারণে হয় তাহলে অ্যান্টিবায়োটিকগুলি সাহায্য করেডায়াবেটিস মেলিটাস ইন্সুলিন থেরাপি অথবা ওষুধের সাহায্যে এবং কিছু জীবনধারার পরিবর্তন করে নিয়ন্ত্রণ করা হয়যদি কারণটি ওভারঅ্যাক্টিভ ব্লাডারের জন্য হয় তাহলে ব্লাডারের পেশীকে শিথিল করার জন্য ওষুধগুলি দেওয়া হয় ব্লাডার প্রশিক্ষণ ব্যায়ামও সাহায্য করে বেহুস বা অজ্ঞান হওয়া চিকিৎসাগতভাবে সিনকোপ নামেও পরিচিত এটি এমন একটি মেডিকেল শর্ত যেখানে রোগী চেতনার একটি অস্থায়ী ক্ষতি ভোগ করেন এর সংঘটন হল সাধারণ এটি বিভিন্ন কারণে সৃষ্টি হতে পারে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে অজ্ঞান হওয়া হল একটি অন্তর্নিহিত চিকিৎসা অবস্থার নির্দেশক এবং সেই কারণে হাল্কাভাবে গ্রহণ করা উচিত নয়অজ্ঞান হওয়ার জন্য প্রাথমিক কারণ হল মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ কমে যাওয়া যা কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্থায়ী হয় এই বিঘ্নিত রক্ত প্রবাহ বিভিন্ন কারণে হতে পারে ভাগ্যক্রমে এটি স্বল্প সময়ের জন্য হয় এবং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই এটি বিপজ্জনক হয় না তবে এটি একটি অন্তর্নিহিত শর্তের ইঙ্গিত করে যা জীবনের ক্ষেত্রে আশঙ্কাজনক হতে পারে অজ্ঞান হওয়ার সাথে যুক্ত সাধারণ লক্ষণ ও উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছেফ্যাকাশে হয়ে যাওয়াবমি বমি ভাবমাথা হাল্কা লাগাহৃদস্পন্দনের ছন্দের পরিবর্তন (আরও পড়ুন অ্যারিথমিয়ার চিকিৎসা)ঝাপসা দৃষ্টি অথবা দেখতে অসুবিধা হওয়াজ্বরঠাণ্ডা ঘাম যুক্ত ত্বক এর প্রধান কারণগুলি কি কিউপরে বর্ণিত হিসাবে অজ্ঞান হওয়ার জন্য প্রধান কারণ হল মস্তিষ্কে রক্তপ্রবাহ ব্যাহত হওয়া এই ব্যাহত হওয়া রক্তপ্রবাহ নানা কারণে ঘটতে পারে তার মধ্যে কিছু হলহার্ট অ্যাটাক হৃদযন্ত্র বিকল হয়ে যাওয়ার কারণে হৃদপিণ্ড আর রক্ত পাম্প করতে পারে নাস্ট্রোকের কারণে মস্তিষ্কে অক্সিজেনের ঘাটতিপর্যাপ্ত পরিমাণ রক্ত বা তরল পাম্প করতে না পারা (ডিহাইড্রেশন তীব্র ডায়রিয়া)মস্তিষ্কে রক্ত পাঠানোর জন্য রক্তবাহিকাতে টোনের ঘাটতিবেহুস হওয়ার জন্য অন্যান্য সাধারণ কারণগুলি হলএকভাবে প্রচণ্ড তাপ লাগলেঅত্যধিক চাপ অথবা খাটুনিদুর্বলতা অথবা রক্তের অভাবশরীরে জলের অভাবঅতিরিক্ত অ্যালকোহলের পান প্রাতরাশ না করার কারণে রক্তে শর্করার মাত্রা হ্রাস বেহুস হওয়া হল বিভিন্ন চিকিৎসা অবস্থার একটি বিশিষ্ট এবং সাধারণ উপসর্গ এবং এটি নির্ণয়ের জন্য পরীক্ষার প্রয়োজন হয় না যাইহোক অজ্ঞানের সময় রোগীকে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাওয়া হলে ডাক্তার রোগীর স্বাস্থ্য পরীক্ষা করবেন এবং অজ্ঞান হওয়া সম্ভাব্য কারণ সনাক্ত করবেনঅজ্ঞান হওয়ার ঘটনার পুনরাবৃত্তি প্রতিরোধ করার জন্য আদেশ অনুসারে অন্তর্নিহিত কারণের রূপরেখা বের করা গুরুত্বপূর্ণশরীরের যথাযথ কার্যাকারিতা পরীক্ষা করার জন্য ডাক্তার আপনাকে নির্দিষ্ট পরীক্ষা করতে পরামর্শ দিতে পারেন এইগুলি অন্তর্ভুক্ত হতে পারেহৃদযন্ত্রের কার্যকলাপ পরীক্ষা করতে ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম (ইসিজি/ECG)অ্যানিমিয়া আছে কি না তা নিশ্চিত হতে রক্ত পরীক্ষাডায়াবেটিস অথবা সংক্রমণ হরমোনজনিত রোগ এবং অন্যান্য ব্যাপার জানার জন্য রক্ত পরীক্ষাপ্রয়োজনে মাথার খুলির এক্সরে অথবা সিটি স্ক্যান করানোচিকিৎসা অন্তর্নিহিত কারণের উপর নির্ভর করে যদিও বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অজ্ঞান হওয়া কয়েক সেকেন্ডের জন্য স্থায়ী হতে পারে যে অজ্ঞান হওয়া দীর্ঘস্থায়ী বা পুনরাবৃত্ত হয় তাদের তাড়াতাড়ি নির্ণয় করা প্রয়োজন কারণের উপর ভিত্তি করে চিকিৎসা নাটকীয়ভাবে পরিবর্তীত হয় একটি খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন হৃদরোগ এবং ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণ ইত্যাদি ফেসিয়াল প্যারালাইসিস হল একটি মেডিকাল অবস্থা যা মুখের স্নায়ুর ক্ষতির কারণে সৃষ্ট হয় যার ফলে রোগী মুখ নাড়াচাড়া করে খেতে পারে না বা কথা প্রকাশ করতে পারে না ফেসিয়াল প্যারালাইসি হঠাৎ হতে পারে আবার ধীরে ধীরেও হতে পারে ফেসিয়াল প্যারালাইসিসের সাধারণ কারণগুলির মধ্যে রয়েছেমুখের স্নায়ুতে সংক্রমণ অথবা প্রদাহমাথায় টিউমারঘাড়ে বা গলায় টিউমারস্ট্রোকমানসিক আঘাত বা মানসিক চাপবেলস পালসি (মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে এই ধরনের সমস্যা সচরাচর হয়ে থাকে)এটি অন্যান্য কারণেও ঘটতে পারে যেমনমুখে আঘাত লাগালাইম রোগ সংক্রমণ (পোকার দ্বারা মানুষের মধ্যে ব্যাকটেরিয়াগত সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে)ভাইরাসজনিত সংক্রমণভাস্কুলাইটিসের মতো অটোইমিউন রোগগুলিভুলভাবে করা দাঁতের চিকিৎসা যা কিছু মুখের স্নায়ুকে ক্ষতিগ্রস্ত করেবিরল ক্ষেত্রে জন্মের সময় শিশুগুলিও মুখের প্যারালাইসিসে আক্রান্ত হতে পারে (যা পরবর্তীকালে সেরে যায়) আপনি যদি উপরের উল্লিখিত লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির মধ্যে কোনটি অনুভব করেন তবে আপনাকে অবশ্যই অবিলম্বে আপনার ডাক্তারের সাথে অ্যাপয়েন্টমেন্টটি (সাক্ষাৎ) বুক করতে হবে মুখে অসাড় অবস্থা এবং দুর্বলতা ফেসিয়াল প্যারালাইসিসের গুরুত্বপূর্ণ প্রাথমিক উপসর্গ হিসাবে বিবেচনা করা যেতে পারেডাক্তার আপনার মুখের উভয় দিকের শারীরিক পরীক্ষা করবেন তিনি আপনাকে আপনার সাম্প্রতিক স্বাস্থ্য সমস্যা এবং আঘাতের বিষয়েও প্রশ্ন জিজ্ঞাসা করবেন তারপর তিনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন এবং আপনাকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা এবং রোগনির্ণয়সংক্রান্ত পদ্ধতি করার জন্য বলতে পারেন এইগুলি অন্তর্ভুক্ত হতে পারেরক্ত পরীক্ষা (রক্তে শর্করা বা সুগারের মাত্রা জানার জন্য)লাইম টেস্টস্নায়ু ও পেশীর কাঠামো পরীক্ষা করার জন্য ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি (ইএমজি)মাথার সিটি স্ক্যান/এমআরআইরোগের কার্যকর নির্ণয়ের পরে ডাক্তার বিভিন্ন পরামিতি (যেমন রোগীর বয়স কারণ এবং রোগের তীব্রতা) বিবেচনা করার পরে আপনাকে প্রাসঙ্গিক চিকিৎসার বিকল্পগুলি উল্লেখ করবেন যা বিস্তৃতভাবে অন্তর্ভুক্তফিজিক্যাল/স্পিচ থেরাপিমুখের পেশীর প্রশিক্ষণের থেরাপিমুখের পেশীর ওপর নিয়ন্ত্রণ বৃদ্ধি করতে বায়োফিডব্যাক প্রশিক্ষণমুখে শারীরিক ক্ষতি এবং চোখ বন্ধে সাহায্য করার ক্ষেত্রে প্লাস্টিক সার্জারিউচ্চ রক্তচাপ মত অন্তর্নিহিত কারণের জন্য নির্দিষ্ট ওষুধগুলি খুব প্রয়োজনীয় হতে পারে এশেরিকিয়া কোলাই সাধারণত ই কোলাই নামে পরিচিত এটি আপনার অন্ত্রে প্রাকৃতিকভাবেই থাকে 1880র দশকের শেষ দিকে আবিষ্কৃত হওয়ার সময় থেকেই এই ব্যাকটেরিয়া ব্যবহৃত হয়েছে মাইক্রোবাইলোজি এবং বায়োটেকনোলোজির গবেষণায় কারণ এর ব্যবহার সহজ এবং এটি বায়বীয় ও অবায়বীয় দুই অবস্থাতেই বৃদ্ধির ক্ষমতা রাখে এর 7টি ভিন্ন রোগসম্বন্ধনীয় ধরন রয়েছে যা একাধিক সংক্রমণের জন্য দায়ী যেমন মূত্রনালীতে সংক্রমণ (ইউটিআই) রক্তে বিষক্রিয়া মেনিনজাইটিস এবং ডায়রিয়া ভারতে প্রতিবছর সাধারণত ই কোলাই সংক্রমণ দেখা যায় ডায়রিয়া এবং ইউটিআই এর মধ্যে খুবই সাধারণ আপনার অনেকরকম উপসর্গের অভিজ্ঞতা হতে পারে এটির উপর নির্ভর করে যে কোন ধরনের ই কোলাই সংক্রমণ আপনার হয়েছে সংক্রমণের ধরণের উপর ভিত্তি করে যে সকল লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি দেখা যায়শিশুদের ডায়রিয়া এবং ভ্রমণকারীদের ডায়রিয়া জলের মতো মলত্যাগ (কখনও কখনও সাথে কফও থাকে) এবং বমিরক্তপ্রদাহজনিত কোলাইটিস রক্তযুক্ত মলক্রোনস রোগের সাথে ই কোলাই সংক্রমণ অন্ত্রে অনবরত প্রদাহ অন্ত্রের দেওয়ালে ক্ষত এবং জলের মতো মলত্যাগইউটিআই মূত্রত্যাগের সময় ব্যথা প্রস্রাবে দুর্গন্ধ এবং প্রচন্ড জ্বরনবজাতকের মেনিনজাইটিস সদ্যোজাতদের প্রচন্ড জ্বরের লক্ষণ সংক্রমণের প্রধান কারণ হল রোগজনক ই কোলাইয়ের কারণে খাবার এবং জল দূষিত হওয়া যদিও ই কোলাই অন্ত্রের ভিতরে বন্ধুত্বপূর্ণ একটি ব্যাকটেরিয়া তবে এটি রোগজনক প্রজাতির হওয়ার কারণে মানুষের দেহে ব্যাপক ক্ষতি সৃষ্টি করতে পারে এগুলি এমনকি সুস্থ শরীরেও সংক্রমণ তৈরী করতে এবং ছড়িয়ে পড়তে পারে এই সকল উপায়েদূষিত জল পানদূষিত খাবার খাওয়াই কোলাই দ্বারা দূষিত মাটিতে উৎপন্ন সব্জি খাওয়ার কারণেঅস্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাসহাসপাতালের দূষিত আবর্জনার প্রবাহে থাকা ই কোলাই বিভিন্ন ই কোলাই সংক্রমণ নির্ণয়ের জন্য প্রধানত নমুনায় উপস্থিত ব্যাকটেরিয়া বা তার বিষের পরীক্ষা করা হয় সংক্রমণের উপর নির্ভর করে যেসব নির্ণয়কারক পরীক্ষাগুলি করা হয়ইউটিআই মূত্র পরীক্ষা এবং মূত্র অনুশীলনডায়রিয়া মলের নমুনা পরীক্ষানবজাতকের মেনিনজাইটিস সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড (সিএসএফ) পরীক্ষা এবং অনুশীলনক্রোনস রোগ অন্ত্রের ক্ষত পরীক্ষার জন্য প্রচলিত রেডিওলজি এবং আলসারেটিভ কোলাইটিস থেকে তাদের আলাদা করা পাশাপাশি ই কোলাইয়ের উপস্থিতি নিশ্চিত করার জন্য মলের পরীক্ষা করা হয়ই কোলাই যেহেতু অনেকগুলি ওষুধ প্রতিরোধকারী ক্ষমতাযুক্ত তাই এর চিকিৎসা কঠিন হতে পারে ই কোলাই সংক্রমণের চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি হলযুক্তিসঙ্গতভাবে অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহারপ্রোবায়োটিকসব্যাকটেরিওফেজ থেরাপিঅ্যান্টিমাইক্রোবিয়াল পেপ্টাইডওষুধের সাথে নিজের যত্ন নিতে হবে যেমন পরিমান মতো জল খাওয়া এবং বিশ্রাম নেওয়া উপকারী হতে পারেপ্রতিরোধমূলক ব্যবস্থাগুলি হল সঠিক স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সতর্কভাবে খাবার খাওয়ার অভ্যাস এবং পরিস্কারপরিচ্ছন্ন থাকা ওষুধের অপব্যবহার ওষুধের উপর এক ধরণের শারীরিক ও মানসিক নির্ভরশীলতাকে বোঝায় যাতে কোন একটি ব্যক্তি কোন ওষুধ বারংবার ব্যবহার করতে বাধ্য হয় সারা বিশ্ব জুড়ে ওষুধের অপব্যবহার বর্তমানে কিশোর ও যুবকদের জন্য সবচেয়ে মারাত্মক সমস্যা এটা দেখা গেছে যে প্রায় সমস্ত রকম আসক্তিসৃষ্টিকারী ওষুধ মস্তিষ্কে অধিক উত্তেজনা সৃষ্টি করে এমন কিছু স্নায়ুগত সংকেত প্রেরণ করে যাতে সেই ব্যক্তি একটি আনন্দচঞ্চল অবস্থা উপলব্ধি করে ফলে সেই ব্যক্তি বারবার একই ওষুধ গ্রহণ করতে চায় ওষুধের অপব্যবহার ভারতে একটি অন্যতম সমস্যা এবং এটি সমাজের যেকোনো তলার মানুষদের প্রভাবিত করে বেশীরভাগ সময়ে নিজের অজান্তেই যুবকযুবতীরা প্রেসক্রিপশন করা বা না করা ওষুধের প্রতি অথবা একটি অবৈধ্য আসক্তিকারী ওষুধজাতীয় বস্তুর প্রতি আকৃষ্ট হয় ওষুধের অপব্যবহারের উপসর্গগুলি তিন রকমের হয় শারীরিক আচরণগত ও জৈবিকশারীরিক উপসর্গগুলিবেশি ঘুমানো অথবা অনিদ্রায় ভোগাচোখ লাল হয়ে যাওয়াচোখের তারা প্রসারিত বা সংকুচিত হয়ে থাকাদেহের ওজনে হঠাৎ পরিবর্তনবমিক্ষুধামান্দ্যআচরণগত লক্ষণ ওষুধের অপব্যবহারে রোগীর কিছু অভ্যাস বা ব্যবহার বদলে যায় নিম্নের উপসর্গগুলি চিহ্নিত করতে পারলে অবস্থার অবনতি নিয়ন্ত্রণ করা যেতে পারেসামাজিক যোগাযোগ বদল হওয়াবিষণ্ণতাআক্রমণাত্মক ব্যবহারবিরক্তি বেড়ে যাওয়াএকলা থাকার ইচ্ছাপরিবার পরিজনকে পরিহার করাজৈবিক উপসর্গগুলি ওষুধের অপব্যবহার শরীরের মারাত্মক ক্ষতি করে ওষুধের অপব্যবহারে নিম্নলিখিত জটিলতাগুলি সৃষ্টি হতে পারেলিভার সিরোসিসহেপাটাইটিসএইচআইভি সংক্রমণযক্ষ্মারোগমুখের ভিতরের স্বাস্থ্যসম্বন্ধনীয় সমস্যা ওষুধের অপব্যবহার সংক্রান্ত জাতীয় সংস্থা অনুযায়ী অ্যানাবোলিক স্টেরয়েড বিনা প্রেসক্রিপশনে কিনতে পারা যায় এরকম ওষুধ হেরোইন মেথামফেটামাইন ইত্যাদি অনেক কিছুই অপব্যবহারের ওষুধ হতে পারে ওষুধের অপব্যবহারের কারণ সামাজিক কিংবা মানসিক হতে পারে যে যে কারণে কেউ ওষুধের অপব্যবহার করার চেষ্টা করে সেগুলি হলোকুসঙ্গে পড়ে ওষুধের অপব্যবহারে উৎসাহিত হওয়ানিজের ভাইবোন কিংবা পরিবারের কেউ যদি আগে থেকেই মাদকাসক্ত হয়অপব্যবহার করা যাবে এমন জিনিস একেবারেই কৈশোর অবস্থায় হাতে পেয়ে যাওয়াএকাকিত্ব ও বিষণ্ণতামাবাবার দ্বারা সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ না হওয়া কিংবা কোন পারিবারিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে চলা ব্যক্তির উপসর্গগুলি দেখে ওষুধজাতীয় বস্তুর প্রতি তার আসক্তির বিষয়টি নির্ণয় করা যেতে পারে বিশদে অনুসন্ধান করে দেখার জন্য এই পরীক্ষাগুলি জরুরিচিকিৎসকের বিভিন্ন প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেওয়ারক্ত পরীক্ষামূত্রের পরীক্ষাওষুধের অপব্যবহার রোগটি সম্পূর্ণ ভাবে সারিয়ে তোলা যায় সঠিকভাবে প্রস্তুত করা পুনর্বাসন পদ্ধতির মাধ্যমে রোগীকে সম্পূর্ণ ভাবে সারিয়ে তোলা সম্ভব যে প্রধান দুটি উপায়ে ওষুধের অপব্যবহার রোগটি সারিয়ে তোলা যায় তা হল চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ ও নিয়মিত ওষুধ খাওয়া মানসিক রোগের বিশেষজ্ঞদের সঠিক পরামর্শ ও নিয়মিত ওষুধ খাওয়া বিস্ময়কর ফলদান করতে পারে ওষুধের অপব্যবহার রোধের জন্য যেসব ওষুধ ব্যবহার করা হয়বিষণ্ণতা কমানোর ওষুধমনোরোগের ওষুধঅ্যালকোহলের প্রতিষেধকআফিঙের নেশার প্রতিষেধকজীবনশৈলীর কিছু পরিবর্তন যেমন প্রাত্যহিকভাবে যোগাসন ও ধ্যান মনের শান্তি ফিরিয়ে আনতে পারে যাতে আরো সহজে সেরে ওঠা যায় যদিও নেশার হাত থেকে সম্পূর্ণ ভাবে নিস্তার পাওয়া একটি দীর্ঘ প্রক্রিয়া কিন্তু তারপর এক সম্পূর্ণ স্বাভাবিক ও স্বাস্থ্যকর জীবনযাপন করা সম্ভব নিয়মিত চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া এবং সঠিক চিকিৎসা পদ্ধতি অনুসরণ করে চলা রোগীকে পুরোপুরি সারিয়ে তোলে ওষুধের অপব্যবহারকারীর সম্পূর্ণভাবে অভ্যাস ত্যাগ করতে পরিবার পরিজনের সহযোগিতা এক্ষেত্রে খুবই প্রয়োজনীয় ইউরিনারি রিটেনশন বা প্রস্রাব চেপে রাখা বলতে এমন এক অবস্থাকে বোঝায় যেখানে একজন ব্যক্তি সন্তোষজনকভাবে প্রস্রাব করতে পারে না সেই ব্যক্তি প্রস্রাবের বেগ অনুভব করতে পারে ও তার মূত্রথলি যে পুরো ভর্তি তাও বুঝতে পারে কিন্তু পুরোপুরি প্রস্রাব করে উঠতে পারে নাতীব্র প্রস্রাব চেপে রাখার সমস্যা হঠাৎ করেই হতে পারে এবং যন্ত্রণাকর উপসর্গ দেখা দিতে পারে ফলে তাৎক্ষণিক চিকিৎসার প্রয়োজন হয় যাইহোক বেশ কয়েক বছর যাবৎ প্রস্রাব চেপে রাখার এই সমস্যা থাকলে এবং কোনও যন্ত্রণাকর উপসর্গ যদি না থাকে তাহলে সেই ব্যক্তির আস্তে আস্তে মূত্রথলি পুরোপুরি শূন্য করার ক্ষমতা চলে যায় তীব্র প্রস্রাব চেপে রাখার সমস্যার উপসর্গগুলি নিম্নরূপপ্রস্রাব করতে না পারাপ্রস্রাবের বেগ অনুভব করাতলপেটে ব্যাথাতলপেট স্ফীত হয়ে যাওয়াদীর্ঘকাল যাবৎ প্রস্রাব চেপে রাখার সমস্যার উপসর্গগুলি হলপ্রস্রাব নির্গমণে সমস্যাপ্রস্রাবের অপেক্ষাকৃত সরু ধারাএকবার প্রস্রাব করার পর তাৎক্ষনিকভাবে পুনরায় করার তাগিদপ্রস্রাব করার পর তলপেটে হালকা অস্বস্তি প্রস্রাব চেপে রাখার সমস্যার অনেকগুলি কারণ আছে এবং এর অন্তর্নিহিত কারণগুলি সূদুর প্রসারীশ্রোণীচক্র অথবা যৌনাঙ্গে আঘাত স্নায়ুর সমস্যাআক্রান্ত স্থানে কোন সাম্প্রতিক সার্জারিশারীরিক অবস্থা যেমন ডায়াবেটিস বা মাল্টিপল স্কেলেরোসিসমূত্রথলির পেশীগুলির দূর্বলতাকোষ্ঠকাঠিন্যকিছু ওষুধের প্রভাবেমূত্রনালীর সংক্রমণমুত্রনালীতে প্রতিবন্ধকতা তীব্র প্রস্রাব চেপে রাখার সমস্যাজনিত রোগ নির্ণয়ের ক্ষেত্রে ডাক্তার এইসকল পরীক্ষাগুলি করতে পারেনশারীরিক পরীক্ষাসিস্টোস্কোপিসিটি স্ক্যানইউরোডাইনামিক টেস্ট (যে টেস্টে ধরা পড়ে যে মূত্রথলি ও মূত্রনালী কতটা ভালোভাবে মূত্র সঞ্চিত রাখতে ও মুক্ত করতে পারে)ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফী (আক্রান্ত স্থানের স্নায়ুর কার্যকলাপ পরিমাপ ও বিশ্লেষণ)ডাক্তার এইসকল পদ্ধতিগুলি অবলম্বন করে প্রস্রাব চেপে রাখার সমস্যার চিকিৎসা করতে পারেনমুত্রনালীর প্রসারণ (মুত্রনালীর সম্মুখভাগ প্রসারিত করা যাতে প্রস্রাব সঠিকভাবে নিষ্কাশিত হতে পারে)মূত্রনালীর স্টেন্ট প্রতিস্থাপন (একটি কৃত্রিম নল সন্নিবিষ্ট করে মূত্রনালীর প্রসারণ ঘটানো)প্রস্টেটের ওষুধ (প্রস্রাব চেপে রাখার উপসর্গগুলি দূর করতে প্রস্টেট গ্রন্থির বৃদ্ধি রোধের ওষুধ দেওয়া হয়)মূত্রথলির নিষ্কাশন (একটি নল দ্বারা মূত্রথলি খালি করা হয়)সার্জারি বা শল্যচিকিৎসা ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি হল একটি স্নায়বিক ব্যাধি যা সাধারণত ডায়াবেটিসের জটিলতা হিসাবে দেখা যায় এটি শুধুমাত্র হাত এবং পায়ের উপসর্গগুলি তৈরি করে প্রায় 50 শতাংশ ডায়াবেটিক জনগণের ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি আছে এবং এটি ডায়াবেটিসের দীর্ঘস্থায়ী ক্ষেত্রে বেশি সম্ভাবনাময় আপনার রক্তের গ্লুকোজ স্তর বজায় রাখলে তা রোগ প্রতিরোধ করতে সাহায্য করবেডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথি নিম্নলিখিত ধরনগুলির হতে পারেপেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি যা হাত এবং পায়ের টনটনানি ব্যথা বা অসাড়তা সৃষ্টি করেঅটোনমাস নিউরোপ্যাথি যা স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে আপনার শরীরকে নিয়ন্ত্রণ করেফোকাল নিউরোপ্যাথি যা হাত পা মাথা এবং ধড়ের একটি একক স্নায়ুকে প্রভাবিত করেপ্রক্সিমাল নিউরোপ্যাথি এটা পিছন দিকে হয় যা হিপ পাছা বা উরুর স্নায়ুতন্ত্রকে প্রভাবিত করে এটি শরীরের এক দিককে প্রভাবিত করে এবং কখন কখন অন্য দিককে প্রভাবিত করে এটি প্রচন্ড যন্ত্রণা দেয় এবং লক্ষণীয় ওজন কমায় ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির উপসর্গগুলি তার ধরনের উপর নির্ভর করেপেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির ক্ষেত্রে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি দেখা যায়পায়ের পাতার মধ্যে সংবেদন হারানো বা জ্বলন বা প্রচন্ড ব্যথাভারসাম্য বা সমন্বয় হারানোস্পর্শে সংবেদনশীলতা বর্ধিত হওয়াযেহেতু অটোনমাস নিউরোপ্যাথি অভ্যন্তরীণ অঙ্গগুলির স্নায়ুকে প্রভাবিত করে তার উপসর্গগুলি হলহজমে সমস্যারক্তচাপ কমাঅসংযমঅজ্ঞান হওয়া এবং মাথা ঘোরাঅতিরিক্ত ঘামব্যথার উপলব্ধি হ্রাসফোকাল নিউরোপ্যাথি একটি একক স্নায়ুকে প্রভাবিত করে এবং সেই স্নায়ুর উপর ভিত্তি করে নিম্নলিখিত উপসর্গগুলি দেখা যায়উরুর ব্যথাপিঠের নিচে প্রচন্ড ব্যথা (আরো পড়ুন পিঠের ব্যথার চিকিৎসা)বুকের ব্যথা একটি হার্ট অ্যাটাকের লক্ষণদৃষ্টির সমস্যা বিশেষ করে চোখের ফোকাসেশোনার সমস্যা ডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির সঠিক কারণ এখনো পরিষ্কার নয় যাইহোক যে কয়েকটি কারণ দায়ী সেগুলি হলরক্তে গ্লুকোজের মাত্রা বাড়ার ফলে স্নায়ুতে রাসায়নিক পরিবর্তন হয় ক্ষতিকর স্নায়ু এবং রক্ত ধমনীগুলি যা এই স্নায়ুতে পুষ্টি বহন করেডায়াবেটিক নিউরোপ্যাথির জেনেটিক বৈশিষ্ট্যগুলির কারণে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়াও হতে পারে সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষার পর আপনার ডাক্তারপেশীর শক্তি এবং প্রতিক্রিয়া চেক করতে পারেনঅবস্থান কম্পন তাপমাত্রা এবং হালকা স্পর্শতে পেশীর সংবেদনশীলতা পরীক্ষা করতে পারেনযে অতিরিক্ত পরীক্ষাগুলি করার জন্য অনুরোধ করা হয় তা হল ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি নার্ভ সঞ্চালন গবেষণা আল্ট্রাসাউন্ড এবং নার্ভ বায়োপসিচিকিৎসা রোগীর বয়স স্বাস্থ্য এবং চিকিৎসার ইতিহাসের উপর নির্ভর করে ব্যথাউপশমক ওষুধগুলি দিয়ে রোগীর ব্যথা এবং অস্বস্তি সরানো হয় অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধ টপিকাল ক্রিম ট্রান্সকিউট্যানিয়াস বৈদ্যুতিক স্নায়ু উদ্দীপনা থেরাপি রিলাক্সেশন থেরাপি এবং আকুপাংচার স্নায়ুতে অতিরিক্ত ক্ষতি প্রতিরোধ করতে ব্যবহৃত হয় ডেলিরিয়াম হল মস্তিষ্কের ক্রিয়ার হঠাৎ অবক্ষয় যা মানসিক কর্মহীনতা সৃষ্টি করে ডেলিরিয়ামের অবস্থায় একজন ব্যক্তি দ্রুত মানসিক অবস্থার পরিবর্তন অনুভব করেন এটিকে তীব্র বিভ্রান্তিকর অবস্থাও বলা হয় মানসিক অবস্থার দ্রুত পরিবর্তন হয়ে যাওয়াই হল ডেলিরিয়ামের বৈশিষ্ট্য এর মধ্যে এই পরিবর্তনগুলি দেখা যায়হঠাৎ ভেবাচেকা (বিভ্রান্তি)সতর্কতা এবং মন‌োযোগঅনুভূতি এবং উপলব্ধিপেশীর সমন্বয় ডেলিরিয়ামের অবস্থায় একজন খুব ধীরে ধীরে চলতে পারে (হাইপোঅ্যাক্টিভ) বা অস্থির দেখাতে পারে উত্তেজিতভাবে চলাফেরা (হাইপারঅ্যাক্টিভ)ঘুমের ধরন বা সূচিআবেগ এবং ব্যক্তিত্বঘাঁটান চেতনজ্ঞানীয় দক্ষতায় হানিঅন্যান্য উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছেপ্রস্রাবে অসংযমস্বল্পমেয়াদি স্মৃতি এবং স্মরণ করায় হ্রাসপ্রাপ্তি (আরও পড়ুন স্মরণশক্তি হারানোর কারণ)চেতনা অথবা সচেতনতা ঢেকে যাওয়ামতামত প্রকাশের সময় অসংগঠিত চিন্তাভাবনার প্রকাশ পায়স্নায়ুতন্ত্রের মধ্যে পরিবর্তনের দ্বারা কম্পনেরমত আন্দোলন প্রকাশ পায়মনোযোগে অসুবিধা ডেলিরিয়াম হল একটি বহুবিধ অবস্থাগৌণ অবস্থা থেকে প্রধান অবস্থা পর্যন্ত ডেলিরিয়াম হতে পারে যার মধ্যে রয়েছেডিমেনশিয়া (একটি অপরিবর্তনীয় ধীর গতির ব্যাধি যা একটি ব্যক্তির স্মৃতিকে প্রভাবিত করে)স্ট্রোক স্নায়ুগত সংক্রমণ/প্রদাহের মত জীবননাশক রোগগুলি যেমন মেনিনজাইটিস এনসেফালাইটিস এবং মস্তিষ্কে অধিমাংস মস্তিষ্কে টিউমার মস্তিষ্কে আঘাতগুরুতর সার্জারি কিছু সাধারণ বিপরীত কারণগুলি মধ্যে রয়েছে (অস্নায়ুবিক কারণ)রাসায়নিকের ভারসাম্যহীনতা যা স্নায়ুর সংকেতকে প্রেরণ করেড্রাগের অতিরিক্ত মাত্রা ড্রাগের উল্টো প্রতিক্রিয়া বা ড্রাগের মিথষ্ক্রিয়ামদের অপব্যবহার যখন একজন অভ্যসগত মদ্যপান ছাড়ার চেষ্টা করেন তখন অপসারণের উপসর্গ হিসাবেও ডেলিরিয়াম হতে পারেইলেকট্রোলাইট ইমব্যালেন্স হরমোনগত রোগপদ্ধতিগত সংক্রমণ মূত্রনালীর সংক্রমণ শ্বাসযন্ত্রের অন্ত্র সংক্রমণ ডেলিরিয়ামের রোগ নির্ণয়ের জন্য ব্যক্তিটির চিকিৎসার ইতিহাসের পাশাপাশি রোগীর পর্যবেক্ষণ অত্যাবশ্যকস্নায়ুর কার্যকারিতা মূল্যায়ন করার জন্য আপনার ডাক্তারের আপনাকে কিছু পরীক্ষার ক্রমের মধ্যে দিয়ে নিয়ে যাওয়ারও প্রয়োজন হতে পারেজ্ঞানীয় কার্যকারিতার পরীক্ষাউপলব্ধি এবং গতিদায়ক দক্ষতা মূল্যায়নের জন্য পরীক্ষাআপনার ডাক্তার কিছু সহজ এবং বৈশিষ্ট্যসূচক প্রশ্নগুলির সাথে আপনার চিন্তাভাবনার মূল্যায়নও করতে পারেনঅন্যান্য অনুসন্ধানগুলির মধ্যে রয়েছেবুকের এক্সরেইইজি(ইলেকট্রোএন্সেফালোগ্রাম)সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড পরীক্ষামস্তিষ্কের এমআরআই অথবা সিটি স্ক্যানমূত্র পরীক্ষাগুলিডেলিরিয়াম ডিমেনশিয়ার অনুরূপ উপসর্গগুলি দেখায় ডেলিরিয়ামের আকস্মিক সংঘটন এবং চাক্ষুষ হ্যালুসিনেশন যা ডিমেনশিয়া থেকে এটাকে পার্থক্য করতে সাহায্য করেডেলিরিয়ামের জন্য চিকিৎসার নিম্নাবস্থিত কারণসূচক বিষয়গুলি হলননফার্মাকোলজিকাল পদ্ধতিগুলি হলসহায়ক যত্ন রোগীকে মেডিকেল ও হাসপাতালের যত্ন দেওয়া উচিত সামাজিক চাহিদায় এবং রোগীর আশেপাশের পরিবেশের দিকে লক্ষ্য দেওয়া প্রয়োজনীয় একটি স্থিতিশীল এবং সুপরিচিত পরিবেশ তৈরি করে রোগীকে সাহায্য করা যায়ঘুমের রুটিন মেনে চলা উচিত ঘুম সম্পর্কিত সমস্যাগুলি দুধ ম্যাসেজ বা ভেষজ চায়ের সাথে চিকিৎসা করা উচিতফিজিওথেরাপি এবং প্রতিদিনের হাঁটা গতিদায়ক দক্ষতাগুলির উন্নতিতে সাহায্য করেবাড়িতে একজন পেশাদারী নার্স রাখা সবসময়ের জন্য ভালোআচরণ পরিবর্তনের থেরাপি ফার্মাকোলজিকাল থেরাপিগুলি হলসংক্রমণ ব্যথা দীর্ঘস্থায়ী অসুস্থতা এবং অ্যালার্জির মত অন্তর্নিহিত রোগের চিকিৎসার জন্য ওষুধএন্টিসাইকোটিক ড্রাগমাঝে মাঝে উত্তেজনা এবং অস্থিরতার ক্ষেত্রে হালকা সিডেটিভস্ (ঘুমের ওষুধ) ব্যবহার করা যেতে পারে সিস্টাইটিস হল একটা সাধারণ সংক্রমণ যা ইউরিনারি থলিতে প্রদাহ সৃষ্টি করে এটা একটা নিম্ন মূত্রনালীর সংক্রমণ এবং এটা সাধারণত পুরুষদের চেয়ে মহিলাদের মধ্যে বেশী দেখা যায় এটি 25 বছর এবং তার বেশি বয়সের মানুষকে প্রভাবিত করে যার ফলে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয় বিশ্বব্যাপী 20 মিলিয়নের বেশী মানুষের সিস্টাইটিস আছে সাধারণ লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি অন্তর্ভুক্ত হতে পারেপ্রস্রাব করার স্থির এবং প্রবল ইচ্ছা (আরো পড়ুন ঘনঘন প্রস্রাবের কারণ)প্রস্রাব করার সময় মূত্রনালীর ভেতরে জ্বালা অনুভবঘোলাটে ও প্রচন্ড গন্ধযুক্ত প্রস্রাবপেলভিক (শ্রোণী) স্থানে অস্বস্তিহাল্কা জ্বরপ্রস্রাবে রক্ত এটা প্রায়শই একটা ব্যাকটেরিয়াগত সংক্রমণের কারণে হয় এর চিকিৎসা না করালে সংক্রমণটি উপরের অংশে গমন করতে পারে ও পাইলোনেফ্রাইটিসের নেতৃত্বে কিডনিকে প্রভাবিত করে মহিলাদের তাদের ছোট ইউরেথ্রার (মূত্রনালীর) কারণে পুরুষদের চেয়ে ঘনঘন সংক্রামিত হতে পারেঅন্যান্য কারণগুলি মধ্যে রয়েছেমূত্রস্থলীর পদ্ধতিতে ত্রুটিকোনো বাইরের পদার্থ যেটা মূত্রস্থলীকে উত্তেজিত করেমূত্রস্থলীতে স্নায়ুর কর্মহীনতাইমিউন সিস্টেমের ব্যাধির কারণে সিস্টাইটিস হতে পারেমূত্রস্থলীতে পাথরকখনও কখনও এটি মাদকদ্রব্য রেডিয়েশন থেরাপি অথবা মহিলাদের জন্য হাইজিন স্প্রের মত নির্দিষ্ট উত্তেজক অথবা স্পারমিসাইডসের ব্যবহারের ফলে হতে পারে ক্যাথেটারযুক্ত মূত্রনালীর সংক্রমণও সাধারণ প্রাথমিকভাবে উপসর্গগুলি তাদের সময়সীমা এবং দৈনন্দিন রুটিনের উপর প্রভাব ফেলে অন্যান্য সম্ভাব্য শর্তগুলিকে বাতিল করার জন্য মূল্যায়ন করতে পারে রোগ নির্ণয়ের মধ্যে রয়েছেশারীরিক ও স্নায়বিক পরীক্ষাব্যথার মূল্যায়ন এবং প্রস্রাব এড়ানোর পরীক্ষাপ্রস্রাব বিশ্লেষণপ্রস্রাব কালচারসিস্টোস্কোপি মূত্রথলির ভিতরটা দেখার জন্য একটি ক্যামেরালাগানো টিউব ব্যবহার করা হয়পেলভিসে (শ্রোণীতে) আল্ট্রাসোনোগ্রাফি ও এক্সরের মত ইমেজিং পরীক্ষাসিস্টাইটিসের চিকিৎসায় অঙ্গটিকে সমূলে সারানোর জন্য অ্যান্টিবায়োটিকের ব্যবহার করা হয় হালকা সংক্রমণের জন্য অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স নারীদের জন্য 3 দিন এবং পুরুষদের জন্য 714 দিনের বেশি দেওয়া হতে পারে না এমনকি যদি উপসর্গগুলি আরও ভাল হতে শুরু করে তাহলেও পূর্ণ অ্যান্টিবায়োটিক কোর্স গ্রহণ করা বাধ্যতামূলক ওভারদ্যকাউন্টার ওষুধগুলি এবং অ্যাসকর্বিক অ্যাসিডের মত কিছু অ্যাসিডিক পণ্য আছে যা সংক্রমিত এজেন্টগুলিকে নাশ করেজীবনধারা পরিবর্তনের মধ্যে রয়েছেপ্রচুর জল খাওয়াসংক্রমণ প্রতিরোধ করার জন্য অভ্যন্তরীণ এলাকায় সম্পূর্ণ ব্যক্তিগত স্বাস্থ্যবিধি ও পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখাঅস্বস্তিকর কারণ হতে পারে যে খাবারগুলি তাদের তালিকা তৈরি করা এবং সেগুলি এড়িয়ে চলামশলাযুক্ত খাবার চকলেট এবং কফির মত কিছু খাবার এড়িয়ে চলাপ্রস্রাব করার সময় প্রস্রাব ধরে রাখার চেষ্টা করে মূত্রাশয়ের ক্ষমতা বাড়ানপ্রস্রাব করার পর বিশেষতঃ মহিলাদের মলদ্বার থেকে মূত্রনালীর সংক্রমণ ছড়ানো এড়াতে সামনে থেকে পিছনে অবশ্যই মুছে নেবেনবাথটাবের বদলে ঝরনার ব্যবহার সংক্রমণ কমাতে পারেসিস্টাইটিসে যদি সতর্কতা না নেওয়া হয় তবে এটা অস্বস্তিকর হতে পারে কিন্তু সাধারণত এটি যথাযথ চিকিৎসা করার সাথে সাথে সহজেই এবং কার্যকরভাবে এটা সারিয়ে তোলা যেতে পারে সিস্টিক ফাইব্রোসিস হল একটা জেনেটিক অসুখ যা ধীরে ধীরে বিভিন্ন অঙ্গকে আক্রান্ত করে বিশেষ করে ফুসফুসের দ্বারা এখানে মিউকাসের সঞ্চয় হয় এটা পৌষ্টিক তন্ত্রে এবং জনন তন্ত্রের মধ্যেও প্রকট হতে দেখা যায় এটা একটা প্রাণঘাতী অবস্থা যাতে বিশ্বময় প্রায় 70000 লোক আক্রান্ত হয় জাতিগত দলের মধ্যে এটা ককেশীয়ানদের মধ্যে ব্যাপকভাবে দেখা যায় ভারতে 10000 জন্মগ্রহণকারীর মধ্যে 1 জনের সিস্টিক ফাইব্রোসিস রোগ হতে দেখা যায় সিস্টিক ফাইব্রোসিসের বেশীরভাগ উপসর্গগুলি শৈশবে দেখা যায় কারণ প্রতি বছর ফুসফুসের কার্যক্রমের অবনতির সাথে শিশুরা অধিক শ্বাসকষ্টে ভোগে আক্রান্ত ব্যক্তির মধ্যে উপসর্গগুলি শৈশবেই বৃদ্ধি হতে পারে বা তাদের পরবর্তী জীবনেও এটা বৃদ্ধি হতে পারে যেটার তীব্রতা পরিবর্তিত হতে পারে উপসর্গগুলি শুরু হবার আগেই জীবনের প্রথম মাসে নবজাতকের মধ্যে সিস্টিক ফাইব্রোসিস নির্ণয় করা যেতে পারেঘন ঘন শ্বাসকষ্টের উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছেপ্রচন্ড কাশি (শুকনো বা মিউকাস সহ)সাঁ সাঁ করে নিঃশ্বাস ফেলাবারবার সাইনাস সংক্রমণএলার্জিপরিপাক নালীর উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছেঅপ্রীতিকর বৃহৎ চকচকে অন্ত্র আন্দোলনযথেষ্ঠ খাওয়ার সত্ত্বেও অস্বাভাবিকভাবে ওজন কমে যাওয়ামন্দীভূত হওয়া বৃদ্ধিঅন্ত্রের অনিয়মঘনঘন পিপাসা এবং প্রস্রাব পাওয়া (আরো পড়ুন ঘনঘন প্রস্রাবের কারণ) সিস্টিক ফাইব্রোসিস স্বাভাবিক শারীরিক নিষ্কাশন যেমন মিউকাস ঘাম এবং পৌষ্টিক রসকে আক্রান্ত করে মিউকাস ঘন হয়ে যায় এবং ফুসফুসে প্রবেশ করে শ্বাস প্রশ্বাসে অসুবিধা সৃষ্টি করে এটা একটা জিনঘটিত সমস্যা এটা প্রোটিনকে আক্রান্ত করে (সিস্টিক ফাইব্রোসিস ট্র্যান্সমেমব্রান কনডাক্টেন্স রেগুলেটর [সিএফটিআর]) যেটা শরীরের কোষের ভিতরে ও বাইরে লবনের বাড়াকমাকে প্রভাবিত করে যদি পিতামাতা উভয়েই জিনটির বাহক হয় তবে ত্রুটিপূর্ণ জিন শিশুর কাছে স্থানান্তরিত হয় যদি পিতামাতার মধ্যে যে কোনো একজনের এই জিন থাকে তবে বাচ্চার মধ্যে সিস্টিক ফাইব্রোসিসের উপসর্গগুলি বৃদ্ধি হতে পারে না কিন্তু বাহক হতে পারে এবং পরবর্তী প্রজন্মে রোগ ছড়াতে পারেঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছেজেনেটিক কারণসিএফটিআর প্রোটিনের ক্ষতির মাত্রা অনুযায়ী জিন মিউটেশন নির্ধারিত হয়জিন মিউটেশনে শ্রেণী I II এবং III হল প্রচন্ড মারাত্মক যখন শ্রেণী IV এবং V অপেক্ষাকৃত মৃদুজীবনযাপন ও পরিবেশগত কারণওজন বজায় রাখার জন্য আরো ক্যালোরির প্রয়োজন যেটা দুর্বহ হতে পারেধূমপান ফুসফুসের কার্যক্ষমতাকে খারাপ করতে পারেমদ্যপান লিভারের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারেবয়সগত কারণবয়সের সাথে উপসর্গগুলি আরো গুরুতর হয় নবজাতকদের স্ক্রীনিং এবং ডায়াগনোসিস এখনকার দিনে খুব দ্রুত সিস্টিক ফাইব্রোসিস সনাক্ত করেনিম্নলিখিত পরীক্ষাগুলি করা যেতে পারেরক্ত পরীক্ষা অগ্নাশয় থেকে ইমুনোরিঅ্যাক্টিভ ট্রিপ্সিনোজেন বা আইআরটির মাত্রা পরীক্ষা করা হয়জেনেটিক পরীক্ষা এটি রোগ নিশ্চিত করার জন্য সম্পাদিত হয়ঘামের পরীক্ষা ঘামে লবনের মাত্রা চেক করতে করা হয় (শিশুদের মধ্যে)পুনরাবৃত্তিমূলক প্যানক্রিয়েটাইটিস নাসাল পলিপস এবং দীর্ঘস্থায়ী ফুসফুসের সংক্রমণের জন্য বড় বাচ্চাদের এবং প্রাপ্তবয়স্কদের উভয় জেনেটিক এবং ঘাম পরীক্ষার সুপারিশ করা হতে পারেসিস্টিক ফাইব্রোসিসের জন্য চিকিৎসার বিকল্পগুলি দেওয়া হলওষুধপ্রয়োগমিউকাস পাতলা করার ওষুধএনজাইম এবং পৌষ্টিক সম্পূরকঅ্যান্টিবায়োটিকপ্রদাহ না হওয়ার ওষুধফিজিওথেরাপিহাওয়া যাবার রাস্তা পরিষ্কার করতে সাহায্য করার জন্য ও সাইনাস নিয়ন্ত্রণ উন্নত করার জন্য ব্যায়াম এবং সম্পূরক ওষুধগুলির প্রয়োজন হতে পারেফুসফুসের ট্রান্সপ্ল্যান্টযদি ওষুধপ্রয়োগ অকার্যকর প্রমাণিত হয় তবে ফুসফুসের ট্রান্সপ্ল্যান্টের নির্বাচিত চিকিৎসা করা হতে পারেসিস্টিক ফাইব্রোসিস উত্তরাধিকারী প্রকৃতির কারণে সম্পূর্ণরূপে নিরাময় করা যাবে না সেইজন্য তাড়াতাড়ি নির্ণয় এবং এর চিকিৎসাই হল এটাকে ঠিক করতে এবং আরও মারাত্মকতা এড়ানোর সবচেয়ে ভালো উপায় সারভাইকাল ডাইস্টোনিয়া (সিডি) হল একটি বিরল স্নায়বিক রোগ যা স্প্যাসমডিক টর্টিকলিস নামেও পরিচিত এবং এটি এক ধরনের ফোকাল ডাইস্টোনিয়া এটি গলার পেশীর একটি অস্বাভাবিক এবং অনিচ্ছাকৃত সংকোচনের দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এটি আপনার মাথাকে পাশে পিছনে বা সামনের দিকে ঝোঁকাতে পারে এবং তার ফলে আপনার কাঁধটি মুচড়েও যেতে পারে যদিও সিডি সব বয়সের পুরুষ ও মহিলাদের মধ্যে ঘটতে পারে তবে সবচেয়ে সাধারণভাবে এটি মহিলাদের মধ্যে এবং 40 থেকে 50 বছর বয়সের মানুষের মধ্যে হয়েছে বলে জানা যায় সিডি দুই ধরনের হতে পারে প্রাইমারি অথবা আইসলেটেড এবং সেকেন্ডারি সিডির সবচেয়ে সাধারণ লক্ষণ হলো গলার পেশীর অস্বাভাবিক অনিচ্ছাকৃত সংকোচন পেশীটির ফিক্ ধরা স্থায়ী ঝাঁকুনিপূর্ণ অথবা উভয়ের সংমিশ্রণ হতে পারে এবং অস্বস্তি শক্ত হয়ে যাওয়া এবং ব্যথা হতে পারে এই সংকোচন বাড়তে পারে এবং কাঁধের পেশীতে ছড়াতে পারে কিন্তু কাঁধের পরের পেশীগুলিকে প্রভাবিত করতে পারে নাস্থায়ী সংকোচনটি ঘাড় এবং মাথার একটি বেমানান অঙ্গবিন্যাসের কারণ যেহেতু ঝাঁকুনিপূর্ণ মাথার আন্দোলনের কারণ হল পর্যায়ক্রমে সংকোচনটি সবচেয়ে সাধারণ বিশ্রী যে অঙ্গভঙ্গিটি দেখা যায় তা হল উভয় দিকে মাথা ঘোরানো যেহেতু থুতনি কাঁধের দিকে বাঁকানো থাকে বেশিরভাগ ক্ষেত্রে আইসলেটেড সিডিটির অন্তর্নিহিত কারণ অজানা থাকে এবং শুধুমাত্র নিউরোলজিক্যাল কারণগুলি এই ঘটনার জন্য দায়ী বলে মনে হয় প্রাইমারি সিডির কারণগুলি হলসিডির একটি পরিবারিক ইতিহাসএকাধিক জিনের পরিবর্তন/জিনগত কারণগুলিপরিবেশগত কারণসেকেন্ডারি সিডির কারণগুলি হলএন্টিসাইকোটিক ওষুধগুলির ব্যবহার করাবমি বমি ভাব চিকিৎসা করতে ওষুধগুলির ব্যবহার যা ডোপামিন রিসেপ্টরগুলিকে ব্লক করেবিষাক্ত পদার্থঅন্যান্য নিউরোডিজেনেরটিভ রোগগুলির উপস্থিতি বেশিরভাগ পরীক্ষাগারের পরীক্ষাগুলি যেমন ইমেজিং কৌশলগুলি সিডির ক্ষেত্রে স্বাভাবিক অতএব রোগ নির্ণয় করার জন্য ক্লিনিকাল পরীক্ষা করা হয় সিডির নির্ণয়ের ক্ষেত্রে নিচের পদক্ষেপগুলি কার্যকরক্লিনিকাল পরীক্ষা এবং সিডি সম্পর্কে জ্ঞানব্যক্তির বিস্তারিত চিকিৎসা ইতিহাসযদি স্পাইনাল কর্ডের সঙ্কোচন সন্দেহ করা হয় তবে ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং সাহায্য করতে পারেযদি সেখানে স্নায়ুর উত্তেজনার কোন চিহ্ন থাকে তবে ইলেক্ট্রোমায়োগ্রাফি সাহায্য করতে পারেসিডির চিকিৎসা পদ্ধতির কার্যকারিতা প্রত্যেক ব্যক্তির ক্ষেত্রে পৃথক হতে পারে এবং বেশিরভাগ পদ্ধতিতে উপসর্গগুলি উপশম করা হয় সিডি এর জন্য উপলব্ধ চিকিৎসা পদ্ধতিগুলি হলোবটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশনমৌখিক ওষুধসার্জারিশারীরিক চিকিৎসাযদিও সিডির সাথে চাপের কোন সংযোগ নেই তবে এটি উপসর্গগুলিকে খারাপ করে তুলতে পারে চাপ উত্তেজনা বা নির্দিষ্ট অঙ্গবিন্যাসের কারণে উপসর্গগুলি বাড়ে এবং ডিস্টোনিয়া সক্রিয় হতে পারেমানসিক চাপ কমানো এবং আপনার অঙ্গবিন্যাসগুলির পরিচালনা করা আপনার উপসর্গগুলি ঠিক করতে সাহায্য করতে পারে মাথা এবং ঘাড়ের বন্ধন ব্যবহার আপনার ব্যথা এবং অস্বস্তি কম করতেও সাহায্য করতে পারে সেরিব্রাল পালসি (সিপি) হল একটি অপ্রগতিশীল স্নায়বিক সমস্যা যা বাচ্চাদের উন্নয়নশীল মস্তিষ্কের আঘাত বা বিকৃতির কারণে ঘটে এটি গুরুতর শৈশব অক্ষমতার একটি খুব সাধারণ কারণ এটি প্রধানত নড়াচড়া এবং পেশী সমন্বয়ের ক্ষেত্রে সমস্যার সৃষ্টি করে ভারতে জন্মগ্রহণ করা 1000 জন জীবিতের মধ্যে আনুমানিক 3 জনের সিপি হবার সম্ভাবনা রয়েছে জন্মের সময় থেকে 5 বছর বয়স পর্যন্ত যেসব ধারাবাহিকতার ধাপগুলি অর্জন করার প্রয়োজন যেমন ঘুরে যাওয়া বসা এবং হাঁটা তা সিপির ক্ষেত্রে দেরি হতে পারে এটি মেয়েদের থেকে ছেলেদের মধ্যে বেশি হয় এবং সাদা মানুষের তুলনায় কালো মানুষের মধ্যে বেশি হয় বয়স ভিত্তিক উপসর্গগুলি হল36 মাসবিছানা থেকে বাচ্চা তোলার সময় মাথা নুইয়ে পড়াসারা শরীরে কঠোরতাপেশীর ক্ষমতা কমে যাওয়াকোমর ও ঘাড় বেশি বেড়ে যাওয়া6 মাসের চেয়ে বেশি বয়সঘুরে যাওয়ার ক্ষমতা কমে যাওয়াএকসঙ্গে হাত আনতে ব্যর্থতামুখে হাত আনতে অসুবিধা10 মাসের থেকে বড়ভারসাম্যহীন হামাগুড়ি দেওয়া চলনসাহায্য নিয়ে দাঁড়ানোর অক্ষমতা এটি মূলত মস্তিষ্কের পর্যায় গঠনের সময় কোনও আঘাত বা অস্বাভাবিকতার কারণে মস্তিষ্কে কোনো ক্ষতি হলে হয় এটি পেশীর গঠন প্রতিক্রিয়া অঙ্গবিন্যাস সমন্বয় আন্দোলন এবং পেশী নিয়ন্ত্রণকে প্রভাবিত করেমস্তিষ্কের উন্নয়নে সমস্যা করতে পারে এমন অন্যান্য কারণগুলি হলপরিবর্তন জিনগত অস্বাভাবিকতা মস্তিষ্কের বিকাশের কারণ হতে পারেপ্রসবকালীন সংক্রমণ যে সংক্রমণগুলি রুবেলার মত গর্ভাবস্থায়ের সময় উন্নয়নকে প্রভাবিত করতে পারেভ্রূণে আঘাত শিশুর মস্তিষ্কে রক্ত প্রবাহ বাঁধা পেলে তা মস্তিষ্কের কাজকর্মকে নষ্ট করতে পারেশৈশবে সংক্রমণ প্রদাহজনক প্রতিক্রিয়া যা মস্তিষ্কসংক্রান্ত এলাকাগুলিকে প্রভাবিত করেমানসিক আঘাতের ক্ষত যানবাহন দুর্ঘটনার ফলে গুরুতর মস্তিষ্কের ক্ষতি হতে পারেঅক্সিজেন অভাব কঠিন শ্রম অথবা প্রসবের সময় অক্সিজেনেই অভাব ডাক্তার লক্ষণগুলি বা উপসর্গগুলির পরীক্ষা করে এবং শারীরিক পরীক্ষা করে শিশুর মূল্যায়ন করে শিশুটিকে একটি শিশুরোগ বিশেষজ্ঞ স্নায়ু চিকিৎসকের কাছে পাঠানো হতে পারেপরীক্ষাগুলির একটি সিরিজ করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারেমস্তিষ্কের স্ক্যানম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) মস্তিষ্কের কোনও ক্ষত বা অস্বাভাবিকতা সনাক্ত করার জন্য ব্যবহৃত হয়ক্রেনিয়াল আল্ট্রাসাউন্ড মস্তিষ্কের প্রাথমিক মূল্যায়ন এটা তাড়াতাড়ি হয় এবং সস্তাইলেক্ট্রোএন্সেফালোগ্রাম (ইইজি) মৃগীরোগ সনাক্ত করতেএছাড়াও অন্যান্য যে পরীক্ষাগুলি করা হয়দৃষ্টির সমস্যাকানে শোনায় বিকলতাকথা বলতে অসুবিধাবুদ্ধিমত্তার অভাবনড়াচড়া না করার রোগসিপির চিকিৎসার জন্য শিশুটির দুর্বলতার উপর ভিত্তি করে স্বাস্থ্যসেবা পেশাদারদের একটি দল দীর্ঘমেয়াদী চিকিৎসা করে ওষুধগুলি মূলত মোটর অক্ষমতা ব্যথার ব্যবস্থাপনা করা এবং বিচ্ছিন্ন ও সাধারণ স্প্যাস্টিটিসম্পর্কিত উপসর্গগুলির চিকিৎসা করতে ব্যবহৃত হয়শিশুর জীবনযাত্রার মান ভালো করতে ওষুধ ছাড়া অন্য ব্যবস্থাগুলি হলোফিজিওথেরাপি পেশী শক্তি এবং নমনীয়তা বাড়ানোর জন্য ব্রেস বা স্প্লিন্টস ব্যবহার করার পরামর্শ দেওয়া হতে পারেঅকুপেশনাল থেরাপি শিশুর অংশগ্রহণ করার দক্ষতা এবং স্বাধীনভাবে কাজকর্ম করা উন্নত করতেবক্তৃতা এবং ভাষার থেরাপি সাইন ভাষার ব্যবহার অথবা কমিউনিকেট ভাষার ব্যবহার বুঝতেবিনোদনমূলক থেরাপি বাইরের কাজে অংশগ্রহণ করতেপুষ্টি এবং খাদ্যতালিকাগত থেরাপি খাবার সমস্যা ঠিক করাতে এবং পর্যাপ্ত পুষ্টি নিশ্চিত করতেনিজেকে যত্ন করার পরামর্শগুলি হলবেশিরভাগ ক্ষেত্রে সিপি প্রতিরোধ করা যায় না তবে পর্যাপ্ত প্রসবকালীন যত্ন নিরাপদ প্রসব এবং দুর্ঘটনা এড়ালে অর্জিত সিপির ঝুঁকি কম হতে পারেভ্রমণের সময় হেলমেট এবং প্রতিরক্ষামূলক সিট বেল্ট ব্যবহার করে শিশুর মাথার আঘাত প্রতিরোধ করুনশিশুর দৈনন্দিন ক্রিয়াকলাপ নিরীক্ষণ করুনশিশুটির অবস্থার উন্নতি ও সন্তানের প্রয়োজন অনুযায়ী চিকিৎসা পরিকল্পনা সমন্বয় করার জন্য চিকিৎসক দলের সাথে বাবামা/তত্ত্বাবধায়কের সহায়তা ও কাজ করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ দীর্ঘমেয়াদী মানসিক সমর্থন এবং যত্ন শিশুর সামগ্রিক স্বাস্থ্য এবং সুস্থতার জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া (সিএম) ম্যালেরিয়ার একটি গুরুতর জটিল অবস্থা যা সিজার্স এবং কোমা নামক স্নায়বিক সিন্ড্রোম বা লক্ষণ দ্বারা চিহ্নিত করা হয় এটা প্রধানত ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকায় বসবাস করে এমন অপেক্ষাকৃত বড় বাচ্চা এবং প্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে দেখা যায় একটি মশার কামড় খাওয়ার পর 2 সপ্তাহের কম সময়ের মধ্যে এবং 2 থেকে 7 দিন জ্বরের পরে সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া দেখা দিতে পারে এটি অস্বাভাবিক আচরণ অবচেতন অবস্থা মৃগীরোগ কোমা এবং অন্যান্য স্নায়বিক উপসর্গ দ্বারা চিহ্নিত করা যায় এটি দেখা যায় যে এক্ষেত্রে 14 টি শিশুর মধ্যে 6 জনের মস্তিষ্কের আয়তন বৃদ্ধি পায় সেরিব্রাল ম্যালেরিয়ার ফলে শিশুদের মধ্যে চলাফেরায় অসুবিধা কথা বলতে সমস্যা বধিরতা এবং অন্ধত্ব দেখা দিতে পারে এর লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির মধ্যে রয়েছেসিজার্স বা খিঁচুনিরেটিনা ক্ষয়চেতনার পরিবর্তনবর্ধিত করোটিসংক্রান্ত চাপ এবং ফোলাভাবমাথা ব্যথাপিঠে ব্যথাবমি বমি ভাববমিস্নায়বিক বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে প্রায়ই গুরুতর বিপাকীয় রক্তে অম্লাধিক্যজনিত বিকার (শরীরের তরলে খুব বেশি অম্লের উপস্থিতি) কম হিমোগ্লোবিন এবং শরীরে চিনির কম মাত্রা থাকে এটি স্ত্রী অ্যানোফেলিস মশার কামড়ের মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে চার প্রজাতির প্লাজমোডিয়াম সংক্রমণের জন্য দায়ী যার মধ্যে পি ফ্যালসিপেরাম থেকে সবচেয়ে মারাত্মক সংক্রমণ ছড়ায় সংক্রামিত রক্ত কোষ দ্বারা মস্তিষ্কের সুক্ষ্ম নলে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হলে সেরিব্রাল ম্যালেরিয়া হয় যার ফলে মস্তিস্ক ফুলে যায় এবং অবশেষে মস্তিষ্কের ক্ষতিসাধন হয় ব্লাডব্রেন ব্যারিয়ার (বিবিবি) যা বাইরের পদার্থের আক্রমণ থেকে মস্তিষ্ককে রক্ষা করে এর ফলে ভেঙ্গে যায় এবং ফাইব্রিনোজেন ছিদ্র দেখা যায় এর ফলস্বরূপ কোমা হতে পারে অন্যান্য যেসব কারণগুলি এই স্নায়বিক জটিলতার জন্য দায়ী সেগুলি হলউচ্চমাত্রায় জ্বরম্যালেরিয়ারোধী ওষুধচিনির মাত্রা হ্রাস পাওয়াসোডিয়ামের মাত্রা হ্রাস পাওয়াঅত্যন্ত কম হিমোগ্লোবিনের মাত্রা ম্যালেরিয়াপ্রবণ এলাকায় সাম্প্রতিক কালে ঘুরতে যাওয়া হয়েছে কিনা এবং অন্যান্য চিকিৎসা সংক্রান্ত ইতিহাস শোনেন ডাক্তাররা এবং তার সাথে একটি শারীরিক পরীক্ষাও করেন ইসকেমিয়াপ্রভাবিত অংশ খুঁজে পেতে ইমেজিং করা হতে পারেকম্পিউটেড টমোগ্রাফি (সিটি) স্ক্যান যাতে সবকিছু স্বাভাবিক দেখা যেতে পারে তবে কিছু বিশেষ বৈশিষ্ট্য পরিলক্ষিত যেমনসেরিব্রাল ওয়েডেমাবিনষ্টকলার জন্য থ্যালামিক হাইপোঅ্যাটেনুয়েশনসেরিব্রেলার শ্বেত পদার্থের হাইপো অ্যটেনুয়েশনম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) রোগ বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে তার সাথে যুক্ত পরিবর্তনগুলি বুঝতে সাহায্য করেলাম্বার পাঙ্কচার চেতনার পরিবর্তিত স্তরের সঙ্গে ফেব্রিলে সিনড্রোমের অন্যান্য কারণগুলিকে পৃথক করতেসেরিব্রাল ম্যালেরিয়া একটি গুরুতর সমস্যা এবং অবিলম্বে এর চিকিৎসা প্রয়োজন হয় চিকিৎসায় মূলত রয়েছেম্যালেরিয়াপ্রতিরোধী ওষুধ প্রতিবন্ধকতা এড়াতে মনোথেরাপি বা কম্বিনেশন থেরাপিইলেক্ট্রোলাইট ভারসাম্য সংশোধন করতে ওষুধঅ্যান্টিএপিলেপটিক ওষুধের উপসর্গ অনুযায়ী ব্যবহারস্টেরয়েড ডেরিভেটিভসঅন্যান্য স্নায়বিক জটিলতা সংশোধন করাঅক্সিজেন থেরাপি শ্বাসকষ্টের ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়নিজের যত্ন নেওয়ার উপায়গুলিপ্রাথমিক পর্যায়ে উপসর্গগুলি সনাক্ত করা গেলে সংক্রমণের প্রভাবগুলি এড়ানো যেতে পারেজ্বরের ওষুধগুলির অপ্রয়োজনীয় ব্যবহার এড়িয়ে চলতে হবে যদি এটি দীর্ঘস্থায়ী জ্বর উপসমে সাহায্য না করেআপনার আশেপাশের জায়গা পরিষ্কার রাখুন এবং মশার প্রজনন ক্ষেত্রগুলিকে বিনষ্ট করুনযথাযথ চিকিৎসা এবং যত্ন মস্তিষ্কের ক্ষতি এবং ম্যালেরিয়ার জটিলতাগুলি কমাতে সহায়ক হতে পারে মুখের জ্বালা পোড়া (বিএমএস) বা ঝলসে যাওয়া মুখ হল এমন একটা অবস্থা যেখানে জিভ টাকরা এবং ঠোঁটের ওপর একটা মানুষ তীব্র জ্বলন্ত সংবেদন অনুভব করেনএটা একটা বিরল অবস্থা এবং উপসর্গ ও কারণগুলো মূলত ব্যক্তি বিশেষে পরিবর্তিত হয় মুখের জ্বালা পোড়ার প্রধান লক্ষণগুলো এবং উপসর্গগুলো হলজিভে একটা জ্বলন্ত সংবেদন যা বেদনাদায়ক হতে পারে এবং একটা পোড়ানো ক্ষতের মত অনুভব হতে পারেগরম চা বা অ্যাসিডিক পানীয়ের মত বিশেষ পানীয়গুলোতে চুমুক দেওয়া অবস্থাটা গুরুতর করে তুলতে পারেএকজন ব্যক্তির মুখের ঠোঁট বা কোণেও জ্বলন্ত অনুভূতি হতে পারেস্বাদ উপলব্ধি পাল্টে যাওয়ায় খাওয়া কষ্টকর হয়কদাচিৎ একটা রোগী মুখে অসাড় অবস্থার (কিছু না অনুভব করার) অভিযোগও করতে পারে বিএমএস এর প্রধান কারণগুলো অন্তর্ভুক্ত করা হলপ্রাথমিক বিএমএস কোন নির্দিষ্ট অবস্থা বা কারণগুলির সাথে সংযুক্ত নয় কারণ সচরাচর ইডিওপ্যাথিক অথবা অজানা থাকেদ্বিতীয় শ্রেণীর বিএমএস একটা নির্দিষ্ট বাহক অথবা নিম্নাবস্থিত রোগের কারণে হয়মুখের সংক্রমণ যেমন ক্যান্ডিডা বা মুখে আলসারের কারণে জ্বলন্ত সংবেদন হতে পারেযখন মুখের লালা তৈরি কমে যায় তখন এক্সেরোস্টোমিয়া বা শুষ্ক মুখ দেখা যায় মুখের শুষ্কতাও বিএমএস সৃষ্টি করেযে মানুষের ডায়াবেটিস অথবা থাইরয়েড রোগ আছে তারা প্রায়ই মুখে জ্বালার অভিযোগ করেন হরমোনের অসামঞ্জস্য এক্সেরোস্টোমিয়ার কারণ যা জ্বলন্ত সংবেদনের সৃষ্টি করেঅ্যাসিড রিফ্লাক্স বা জিইআরডি র মত পাচকস্থলীসংক্রান্ত অবস্থাগুলোও মুখের জ্বালার কারণ হতে পারেঅ্যাক্রিলিকের তৈরি দাঁতের পাটি যার প্রান্তে ধার থাকে তার ফলেও আলসার হতে পারে এবং গালের ভিতরের ভাগে ও মুখের তলদেশে জ্বালা করে রোগীর উপসর্গ এবং শারীরিক পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে বিএমএস এর রোগ নির্ণয় অত্যন্ত সহজ যাইহোক কারণ নির্ধারণ করতে কিছু পরীক্ষা করা যেতে পারেডায়াবেটিস থাইরয়েড রোগগুলোর জন্য রক্ত পরীক্ষালালার পরিমাণ এবং গুণমান নির্ণয়ের জন্য লালা পরীক্ষাবিএমএস এর চিকিৎসাগুলো হলপ্রাথমিক মুখের জ্বালা পোড়া কোন নিম্নাবস্থিত কারণের সাথে সংযুক্ত নয় এবং জ্বলন্ত সংবেদন উপশমের দ্বারা চিকিৎসা হয় এটার জন্য যেমন নির্দিষ্ট খাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন করা অপরিহার্যমশলাদার খাবার অ্যাসিডিক (আম্লিক) খাবার এবং অস্বস্তিদায়ক আহার ত্যাগ করুন ধূমপান এবং মদ্যপানও উপসর্গগুলোকে বাড়াতে পারে তাই তাদের ত্যাগ করুনপ্রয়োজনীয় পুষ্টি সমৃদ্ধ একটা ভাল সুষম খাদ্য খানদ্বিতীয় শ্রেণীর মুখের জ্বালা পোড়া চিকিৎসার জন্য কারণ চিহ্নিত করুনখাদ্যতালিকাগত পরিবর্তন এবং অ্যান্টাসিড ওষুধের দ্বারা অ্যাসিড রিফ্লাক্সের নিয়ন্ত্রণ করা হয়ইন্সুলিন ওষুধ এবং ব্যায়াম দ্বারা হরমোনাল ব্যাধি নিয়ন্ত্রণ করা যায়সংক্রমণের ক্ষেত্রে ফাংগাল ওষুধগুলো এবং অ্যান্টিবায়োটিক কার্যকর হয়আইস চিপস চিবানো ঠান্ডা পানীয় পান অথবা আক্রান্ত এলাকার ওপর অ্যালো ভেরা নির্যাস লাগানোর সাহায্যে বাড়িতে যত্ন করা যায় চোখ জ্বালাপোড়া হল চোখের মধ্যে চুলকানি যন্ত্রণা অথবা জ্বালার অনুভূতি এটা প্রায়ই চোখ থেকে জল নির্গমণের সাথে বারবার ঘটে ব্লেফারাইটিস শুকনো চোখ কনজাঙ্কটিভাইটিস এবং চোখের এলার্জি হল চোখ জ্বালাপোড়ার কিছু সাধারণ কারণ চোখ জ্বালাপোড়ার সাথে যুক্ত বারবার দেখা সাধারণ উপসর্গগুলি হলচোখ থেকে জল পড়াজলপূর্ণ চোখচোখের লালভাবের সাথে বেদনাঅন্তর্নিহিত রোগের উপর নির্ভর করে নির্দিষ্ট উপসর্গগুলি হলব্লেফারাইটিস এটি চোখের পাতার একটি জ্বলন যেখানে চোখের পাতার গোড়াটা তৈলাক্ত দেখায় স্টাইয়ের উপস্থিতির সাথে খুশকির মতো ফ্লেক্সগুলি (লাল ফুলে যাওয়া চোখের পাতার কাছে ডেলার উপস্থিতি)শুকনো চোখ এটা চোখের মধ্যে যন্ত্রণা এবং বিরক্তিকর অনুভূতি চোখের লালভাব চোখের চারপাশে অথবা মধ্যে শ্লেষ্মা স্তরের গঠন চোখে কিছু আটকে থাকার অনুভূতি চিহ্নিত করেচোখের অ্যালার্জি বা কনজাংটিভাইটিস অ্যালার্জি এবং কনজাংটিভের প্রদাহ বেদনা ফোলাভাব এবং চোখে চুলকানি অশ্রুসিক্ত চোখ চুলকানি বন্ধ নাক এবং হাঁচি হয়ে থাকে চোখ জ্বালাপোড়ার সাধারণ কারণগুলি হলোব্যাকটেরিয়া সংক্রমণঅশ্রু গ্রন্থি এবং নালীর অকার্যকারীতাধুলো এবং পরাগের মতো অস্বস্তিকর পদার্থ চোখের মধ্যে ঢুকে এলার্জির কারণ হতে পারেঅতিবেগুনী রশ্মির আলোকসম্পাতে সানবার্ন হওয়ায়চোখ জ্বালাপোড়ার বিরল কারণগুলি হলোধোঁয়া বায়ু বা খুব শুষ্ক জলবায়ুতে থাকলেদীর্ঘদিন ধরে কন্টাক্ট লেন্স ব্যবহার করলেরিউম্যাটয়েড আর্থরাইটিস থাইরয়েড রোগ এবং লুপাসঘুমের ওষুধ অম্বলের ওষুধের মত কিছু ওষুধ চোখ জ্বালাপোড়ার চিকিৎসা করতে ক্রমের মধ্যে অন্তর্নিহিত রোগ নির্ণয় করা খুব গুরুত্বপূর্ণ ডাক্তার একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ চিকিৎসার ইতিহাস নেন বিশেষ করে কোনো অ্যালার্জি অথবা অস্বস্তিকর এবং সংক্রামক এজেন্টের সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত কিনা তা নোট করেনফোলাভাব এবং লালচে ভাব পরীক্ষা করার জন্য একটি স্লিট মাইক্রোস্কোপের সাহায্যে শারীরিক পরীক্ষা করা হয় অশ্রু প্রবাহ এবং অশ্রুর ঘনত্বও পরীক্ষা করা হয়চোখ জ্বালাপোড়ার জন্য চিকিৎসা অন্তর্নিহিত অবস্থার উপর নির্ভর করে সেগুলো হলোসংক্রমণের ক্ষেত্রে অ্যান্টিবায়োটিকবেদনা এবং ফোলা চোখের থেকে মুক্তির জন্য কৃত্রিম অশ্রু বা ডিকঞ্জেস্টেন্ট চোখের ড্রপ এবং গরম ভাপএলার্জির ক্ষেত্রে ডাক্তার নির্দিষ্ট অ্যালার্জেনের থেকে দূরে থাকার পরামর্শ দেবেননিজেকে যত্ন করার পদ্ধতি নিচে দেওয়া হলভাল স্বাস্থ্যবিধি বজায় রাখা সর্বাধিক গুরুত্বপূর্ণঅ্যান্টিবায়োটিক স্প্রে এবং শ্যাম্পু শিশুদের শ্যাম্পু আপনার চোখের পাতা চুল এবং স্কাল্প ধোয়ার জন্য ব্যবহার করা যেতে পারেসানবার্নের ক্ষেত্রে সূর্যালোকের এক্সপোজার এড়ানোর জন্য সানগ্লাস ব্যবহার করুনধুলো বা অন্য কোন বিরক্তিকর এক্সপোজারের এলার্জেন অপসারণের পরে সালাইন চোখের ড্রপ হল অপরিহার্যপ্রচুর পরিমাণে জল এবং মাছের তেলের পরিপূরকগুলি চোখের আর্দ্রতা বজায় রাখতে সাহায্য করে বুলিমিয়া নারভোসা বা বিঞ্জ ইটিং ডিসঅর্ডার হল একটি মানসিক অবস্থা যেটি অতিরিক্ত খাবার খেয়ে নেওয়া এবং সেটিকে শরীর থেকে বের করার অতিরিক্ত প্রচেষ্টার মাধ্যমে চিহ্নিত করা যায় এটি পুরুষ এবং মহিলা উভয়েরই হয় কিন্তু কিশোরী মেয়েদের মধ্যে প্রায় সবচেয়ে বেশি ঘটে ব্যক্তিটি যে কোনও সময়ে বিঞ্জ ইট (অল্প সময়ের মধ্যে প্রচুর পরিমাণে খাবার আগ্রাসী হয়ে খেতে থাকে) করতে চাইতে পারেন এবং খাওয়ার উপর নিয়ন্ত্রণ হারানোর অনুভূতি থাকে তারপর হঠাৎ লজ্জায় পড়েন এই কারণে ব্যক্তি খেয়ে নেওয়া খাবারটি বার করার প্রচেষ্টা করে নিজেই ক্ষতিপূরণমূলক আচরণ দেখাতে চান যেমন জোর করে বমি করা ওজন কমার ওষুধগুলি ব্যবহার করা জোলাপ এবং মূত্রবর্ধক ওষুধ নেওয়া অতিরিক্ত ব্যায়াম এবং উপোস করা মাঝে মাঝে এই অবস্থাটি জীবনকে আশঙ্কাজনকও করতে পারে এর গুরুত্বপূর্ণ লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি হলঅনিয়ন্ত্রিত খাবার খাওয়া সকলের মাঝে খেতে না চাওয়াশরীরের আকৃতি এবং ওজনের ব্যাপারে অত্যন্ত সমালোচনা করামেজাজ বদলান উদ্বেগ এবং বিষণ্নতাএকটি খাবার খাওয়ার পরে ঘন ঘন বাথরুম যাওয়াবমির গন্ধঅত্যধিক ব্যায়াম করাজোলাপ মূত্রবর্ধক এবং ওজন কমানোর ওষুধগুলি ব্যবহার করাওজন বাড়া কমা হয় কিন্তু ওই ব্যক্তি সাধারণত একটি স্বাভাবিক ওজন বজায় রাখে প্রায়শই ডাক্তার এবং কিছু ব্যক্তি মনে করেন যে বুলিমিয়ার ব্যক্তিরা কম ওজনের হয়ে থাকে এবং তার ফলে বুলিমিয়া অনির্ধারিত হতে পারে বা এটি দীর্ঘ সময়ের জন্য ধরা না পড়তে পারেহাত এবং পায়ের ফোলাভাবগাঁটে দাগ অথবা ক্ষতদাঁতের রং বদলে যাওয়া এবং মাড়ি নষ্ট হয়ে যাওয়াখেতে অনিচ্ছা এবং কঠোর ডায়েটিং করা বুলিমিয়ার সঠিক কারণ অজানা থেকে গেছে তবে এই রোগের কিছু কারণ জিনগত পারিবারিক ইতিহাস শরীরের ওজনের সম্বন্ধে চিন্তা এবং শরীরের আকৃতি কম আত্মসম্মান আবেগপূর্ণ ব্যক্তিত্ব বা পরিপূর্ণ চরিত্র উদ্বেগ এবং বিষণ্নতা হতে পারে উপরের লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির উপর ভিত্তি করে ডাক্তার বুলিমিয়া নির্ণয় করতে পারেনখাওয়ার অভ্যাস ওজন কমানোর পদ্ধতি এবং শারীরিক উপসর্গগুলির ওপর প্রশ্নহৃৎপিণ্ডের কাজ পরিমাপ করার জন্য রক্ত প্রস্রাব এবং ইলেক্ট্রোকার্ডিওগ্রাম সহ প্রাথমিক পরীক্ষাডায়গনিস্টিক এবং পরিসংখ্যানগত মডেল5 (ডিএসএম5) টুল রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করার জন্যবুলিমিয়া চিকিৎসার জন্য মনোরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক এবং ডায়েটিসিয়ান সহ পেশাদারদের একটি দলের প্রয়োজন হয় মনোবিদ্যাগত পরামর্শ দিয়ে চিকিৎসা শুরু হতে পারে তবে উপসর্গগুলির তীব্রতার উপর নির্ভর করে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট ওষুধগুলি দেওয়া যেতে পারে এফডিএ (FDA) দ্বারা অনুমোদিত ফ্লাক্সিটিন হল একটি অ্যান্টিডিপ্রেসেন্টস কগনেটিভ বিহেভিয়ারাল থেরাপি সাথে সাইকোথেরাপির অন্তর্ভুক্ত চিকিৎসার অন্যান্য উপায়গুলি হল পরিবারভিত্তিক চিকিৎসা আন্তঃব্যক্তিগত সাইকোথেরাপি পুষ্টি শিক্ষা এবং হাসপাতালে ভর্তি করাবুলিমিয়া কাটানোর জন্য নিয়মিত খাওয়া এবং কোনো খাবার বন্ধ করা উচিত না কিছু সাহায্য গোষ্ঠী আছে যাদের রোগীর পছন্দ অনুযায়ী যোগ করা যেতে পারে চিকিৎসায় সময় লাগলেও বুলিমিয়া সম্পূর্ণ নিরাময় করা যায় মস্তিষ্কের সংক্রমণ হল ব্যাপক প্রচলিত একটি পরিভাষা যা সংক্রমণকে বর্ণনা করতে ব্যবহার করা হয় যা মাথার বিভিন্ন অংশে প্রভাব ফেলে মস্তিষ্কের সংক্রমণ মেনিনজাইটিস ব্রেন অ্যাবসেস এবং এঙ্কেফেলাইটিস এর মতো অবস্থাগুলির পরিচালনা করতে পারে মেনিনজাইটিস হল মাথার আবরণে প্রদাহ (ফোলা) যেখানে এঙ্কেফেলাইটিস মস্তিষ্কের টিস্যু বা কলায় বৃদ্ধি পায় মস্তিষ্কের মধ্যে ফোঁড়া হল পূঁজের একটি থলি যা সংক্রমনের কারণে কলার ভাঙ্গনের ফলে ঘটে মস্তিষ্কের সংক্রমনের যে সাধারণ উপসর্গগুলি দেখা যায় তা হলজ্বরমাথাব্যথাবমিঘাড় শক্তখিঁচুনিদুর্বলতাব্যবহারে পরিবর্তনদেখার সমস্যাকথাবার্তা শিক্ষা স্মৃতি এবং একাগ্রতায় অবনতি ব্যাকটেরিয়া ভাইরাস ছত্রাক অথবা পরজীবীর কারণে মস্তিষ্কের সংক্রমন হয় নিম্নলিখিত উপায়ে অণুজীব মাথায় পৌঁছতে পারেরক্ত দিয়ে একটি ফুসফুস হৃদয় এবং দাঁতের সংক্রমণ রক্তের সাহায্যে মাথায় এবং তার কাঠামোয় পৌঁছতে পারে একটি দুর্বল অনাক্রম্য পদ্ধতির মানুষ বা কোনো রোগ আছে এমন ব্যক্তি অথবা এমন কেউ যিনি ইমিউনোসাপ্রেসেন্ট ওষুধগুলি নিচ্ছেন তাদের মস্তিষ্কে সংক্রমণ বাড়ার ঝুঁকি থাকেসরাসরি যোগাযোগের দ্বারা অণুজীব সার্জারির সময় অথবা একটি খোলা ঘা/ক্ষতের মধ্যে দিয়ে মাথায় প্রবেশ করতে পারেমস্তিষ্কের কাছাকাছি হয়েছে এমন সংক্রমণের মাধ্যমে যেমন কানের মাঝামাঝি অংশে সংক্রমণ মাস্টয়েডাইটিস (মাস্টয়েড হাড় ফোলা যা কানের নিকটে উপস্থিত) এবং সাইনাসের প্রদাহ হয়অতি পরিচিত জীবাণুগুলি যার ফলে মস্তিষ্ক সংক্রমণের হয় সেগুলি হলছত্রাক যেমন টি গন্ডি টি সোলিয়াম এবং এসপেগিলাসব্যাক্টেরিয়া যেমন এনমেনিনজাইটিস এস নিউমোনিয়া এইচ ইনফ্লুয়েঞ্জা এবং অন্যান্যভাইরাস যেমন চিকনগুনিয়া ভাইরাস হারপিস জস্টার এবং সিমপ্লেক্স সাইটোমেগালোভাইরাস এবং ওয়েস্ট নাইল ভাইরাস আপনি যেসব লক্ষণ এবং উপসর্গগুলির উপলব্ধি করবেন তার ভিত্তিতে আপনার চিকিৎসক এমআরআই এবং সিটি স্ক্যানের মতো ডায়েগনস্টিক ইমেজিং পরীক্ষার দ্বারা মস্তিষ্কে অথবা তার আবরণে প্রদাহের উপস্থিতি চিহ্নিত করতে পুঙ্খানুপুঙ্খ শারীরিক পরীক্ষা করবেন রোগনির্ণয় করতে একটি সংক্রমণ সেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুয়েড (সিএসএফ) রোগনির্ণয় (কটিদেশীয় ছিদ্র করা) করা হয় যেখানে সিএসএফ নিম্ন পিঠ থেকে নেওয়া হয় (মেরুদন্ডগত স্তম্ভের কটিদেশীয় স্থানে) এবং অণুজীবের বিশ্লেষণ করা হয় সাধারণ রক্ত পরীক্ষাগুলিও রোগের কারণসংক্রান্ত জীবাণুগুলির সনাক্ত করতে সক্ষমমাইক্রোঅর্গ্যানিজম অ্যান্টিবায়োটিক এন্টিভাইরাল অথবা এন্টিফাঙ্গাল ওষুধগুলির মস্তিষ্কের সংক্রমণের চিকিৎসা করার জন্য দেওয়া হয় মেডিকেশন ভাইরাস এবং কারণসূচক মাধ্যমটির স্থিতিকালের ওপর নির্ভর করে প্রাণনাশের ঝুঁকি দেখা দিলে এমন কিছু নির্দিষ্ট ক্ষেত্রে অস্ত্রোপচার করা হয় মস্তিষ্কে আঘাত বলতে বোঝায় মস্তিষ্কের কোষগুলির কোনও রকম ক্ষতি হওয়া আর তার থেকে কোষগুলির মৃত্যু অথবা ধ্বংস হওয়া এটা বাইরের আঘাত অথবা ভিতরের বিষয়গুলির কারণে ঘটতে পারে যেহেতু মস্তিষ্ক হল সমস্ত শরীরের ক্রিয়াকলাপের নিয়ন্ত্রণ কেন্দ্র তাই মস্তিষ্কে যেকোন রকম আঘাত শরীরের কার্যকারিতাকে প্রভাবিত করতে পারে মস্তিষ্কের আঘাতগুলি হালকা মাঝারি অথবা তীব্র হতে পারে এবং প্রায়ই মারাত্মক হতে পারে মস্তিষ্কের যে অংশে আঘাত লেগেছে মস্তিষ্কে আঘাতের লক্ষণগুলি এবং উপসর্গগুলি তার ওপর নির্ভর করে এই উপসর্গগুলিকে বিস্তৃতভাবে শ্রেণিবিভক্ত করা যেতে পারে জ্ঞানীয় আচরণগত ইন্দ্রিয়লব্ধ এবং শারীরিকজ্ঞানীয় উপসর্গগুলির মধ্যে যা অন্তর্ভুক্তবুঝতে অসুবিধাভাবনা এবং চিন্তাধারা প্রকাশে অসুবিধামনোযোগের অভাবসিদ্ধান্ত নেওয়ার অভাবস্মৃতির হ্রাসআচরণগত উপসর্গগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হলবিরক্তিউত্তেজিত এবং আগ্রাসী মনোভাবচাপ কম সহ্য করতে পারাআলস্যমানসিক চাঞ্চল্যইন্দ্রিয়লব্ধ উপসর্গগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হলদৃষ্টি শ্রবণ অথবা স্পর্শের পরিবর্তিত অনুভূতিচিনতে না পারাস্বাদ এবং গন্ধের পরিবর্তনভারসাম্যের অসুবিধাব্যথা সহ্য করার ক্ষমতা হ্রাসশারীরিক উপসর্গগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হলতীব্র এবং একনাগাড়ে মাথাব্যথাঅবসাদপক্ষাঘাতকম্পন (কাঁপা) এবং খিঁচুনিআলোকাতঙ্ক (আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা)কথাবার্তায় অস্পষ্টতাচেতনা হারানোঘুমের অসুবিধা মাথায় অক্সিজেনের সরাবরাহ বন্ধের কারণে প্রধানত মস্তিষ্কে আঘাত ঘটে যার ফলাফল হল ব্রেন হাইপোক্সিয়া (কলার মধ্যে কম অক্সিজেন) কারণগুলি বাহিরের এবং ভিতরের আঘাত হিসাবে শ্রেণিবদ্ধবাহিরের আঘাতের কারণগুলি (আঘাতমূলক) অন্তর্ভুক্ত করা হলপতনযানসংক্রান্ত আঘাতক্রীড়াঘটিত আঘাতমাথায় আঘাতভিতরের আঘাতের কারণগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হলস্ট্রোকটিউমারঅ্যানিউরিজম (মাথার মধ্যে একটি রক্তবাহিকার বিকৃতি)সংক্রমণবিষ প্রয়োগওষুধের অপব্যবহারস্নায়ুর অসুস্থতা একটি বিশদ রোগ সম্বন্ধীয় ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষা মস্তিষ্কে আঘাতের রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে কিন্তু আঘাতের ব্যাপ্তি প্রবলতা এবং আরোগ্য সম্ভাবনা জানতে সুনিশ্চিত অনুসন্ধান দরকার এই সকল পরীক্ষাগুলি অন্তর্ভুক্ত করা হলকম্পিউটেড টোমোগ্রাফি (সিটি) স্ক্যান এটি হল প্রথম রেডিওলজিক্যাল পরীক্ষা যা আশঙ্কা করা মস্তিষ্কে আঘাতের উপর সম্পাদিত হয় এটি মাথার খুলিতে চিড় রক্তপাত হেমাটোমা এবং কলায় ফোলাভাব অনুসন্ধান করায় সাহায্য করেম্যাগনেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) স্ক্যান এটি হল সিটি স্ক্যানের তুলনায় অধিক (আরও) যথাযথ এবং আরো গুরুত্বপূর্ণ এটি মাথা এবং তার বিভিন্ন অংশের একটি বিশদ দর্শন দেয়চিকিৎসকদের দ্বারা মস্তিষ্কে সংক্রমণের তীব্রতা মূল্যায়নের জন্য গ্লাসগো কোমা স্কেলটি ব্যবহার হয় সর্বোচ্চ স্কোরগুলি নির্দেশ করে কম তীব্র আঘাতের যদিও নিম্ন (কম) স্কোরগুলি নির্দেশ করে তীব্র আঘাতেরমস্তিষ্কে আঘাতের চিকিৎসা প্রাথমিক ভাবে নির্ভর করে এটার প্রখরতার ওপর সাধারণত একটি হালকা আঘাতে কেবলমাত্র উপসর্গগুলির পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন এবং কোনও চিকিৎসার প্রয়োজন নেই অন্যদিকে মাঝারি এবং তীব্র আঘাতের ক্ষেত্রে ভালভাবে চিকিৎসা করার প্রয়োজন সাধারণ ওষুধ প্রয়োগ থেকে অস্ত্রোপচারমস্তিষ্কে আঘাতের ক্ষেত্রে ওষুধজনিত চিকিৎসায় অন্তর্ভুক্তঅ্যান্টিসিজার ড্রাগস মস্তিষ্ক আঘাতের একটি সাধারণ উপসর্গ হল খিঁচুনি ধরা এবং তার থেকে আরও ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে মস্তিষ্ক এক্ষেত্রে অ্যান্টিসিজার ওষুধগুলি চিকিৎসায় দারুন সাহায্য করেডায়ইউরেটিক্স কিছু ধরণের মস্তিষ্কের সংক্রমণের ফলাফলে মস্তিষ্কের চারিদিকে ফুলে ওঠে ডায়উউরেটিক্সের ব্যবহার এই ফোলা কমাতে পারে এবং চাপজনিত উপসর্গগুলি প্রশমনে সাহায্য করেকোমা ইনডিউসিং ড্রাগস যখন মাথা নিজেকে পুনরুদ্ধার করার চেষ্টা করছে এটি বাড়তি অক্সিজেন ব্যবহার করতে শুরু করে কিন্তু যদি রক্ত ধমনীগুলো সঙ্কুচিত অথবা ক্ষতিগ্রস্থ হয় এটি যথেষ্ট অক্সিজেন পায় না এবং এটি পুনরায় মাথার কোষগুলির আঘাত এবং মৃত্যুর কারণ হয় ক্রমের মধ্যে এটিকে পরিহার করতে (এড়াতে) অক্সিজেনের প্রয়োজন কমাতে এবং মাথার কোষগুলোকে কার্যকরী করতে কোমা ইনডিউসিং ড্রাগস ব্যবহার করা হয়মস্তিষ্কে আঘাতের জন্য সার্জারির ভূমিকায় অনেক পদ্ধতি রয়েছে সাধারণত যেগুলি অন্তর্ভুক্তখুলির চিড় মেরামত করামাথা থেকে একটি রক্তের ডেলা সরানোরক্তপাতপূর্ণ ধমনীর সেলাইমস্তকের (মাথার) মধ্যে চাপ দূর করতে একটি ফাঁক তৈরিসার্জারি এবং ওষুধের একপাশে মাথার ক্ষতির দ্বারা আক্রান্ত অঙ্গগুলি এবং মাথার কার্যকারীতা ভাল করতে পুনর্বাসন প্রয়োজনীয় ফিজিওথেরাপি অকুপেশনাল থেরাপি কাউন্সেলিং এবং রিক্রিয়েশন থেরাপি পুনর্বাসনের অন্তর্ভুক্ত ব্রেন হ্যামারেজ হল একটি রক্তপাতের দ্বারা ঘটা অবস্থা এবং যেটি মাথার মধ্যে একটি রক্তের ধমনীর ফেটে যাওয়ার কারণে মাথার চারপাশে প্রধাণত ঘটে থাকে এটিকে মাথার রক্তপাতও বলা হয়ব্রেন হ্যামারেজ মাথার মধ্যে চাপ বাড়াতে পারে অক্সিজেনের সমতা কমায় এবং এইভাবে মাথার কোষগুলিকে হত্যা করে ব্রেন হ্যামারেজের উপসর্গগুলির অবিলম্বে চিকিৎসা করানোর প্রয়োজনজায়গার উপরে নির্ভর করে এখানে চার ধরনের ব্রেন হ্যামারেজ আছেএপিডিউরাল হ্যামারেজসাবডিউরাল হ্যামারেজসাবঅ্যারাকনয়েড হ্যামারেজইন্ট্রাসেরিব্রাল হ্যামারেজ মস্তিষ্কে মধ্যে যেখানে রক্তপাত হয় সেখানে মাথাব্যথা অনুভূত হয় না কারণ মস্তিষ্কের কোষ কোনওরকম অসুবিধা উপলব্ধ করতে পারে না কিন্তু যখন রক্তপাত মেনিনজিসের মধ্যে (মাথার আচ্ছাদন) হয় তখন তীব্র মাথাব্যথা হল সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ এছাড়া অন্যান্য উপসর্গগুলি হলদুর্বলতা অথবা শিহরণ অথবা অসাড় অবস্থা (একটি দিকের ওপর)কথা বলায় অসুবিধাভারসাম্য হারানোদৃষ্টি নষ্ট হওয়াজ্ঞান হারানোখিঁচুনি ব্রেন হ্যামারেজ বিভিন্ন কারণে ঘটতে পারেমস্তিষ্কে মানসিক আঘাত অথবা জখমমস্তিষ্কের ধমনী দুর্বল হওয়া অথবা ফেটে যাওয়াপ্লেটলেটের অভাবের মত রক্তপাতের রোগসিরোসিসের মতো যকৃৎয়ের রোগউচ্চরক্তচাপব্রেন টিউমাররক্তচাপ বৃদ্ধি ব্রেন হ্যামারেজের সবচেয়ে সাধারণ কারণ এর ফলে মস্তিষ্কের রক্তবাহিকাগুলি ক্ষতিগ্রস্ত হয় আর তার থেকে স্ট্রোক হতে পারে 13 স্ট্রোক এর থেকেই হয়আঘাতের কারণে রক্ত যখন টিস্যু বা কলাকে প্রভাবিত করে তখন তা ফোলার কারণ হয় এটিকে সেরিব্রাল ওডেমা বলা হয় জমা রক্ত হেমাটোমা তৈরি করে যেটি মস্তিষ্কের কলার কাছে চাপ বাড়ায় এবং মস্তিষ্কের কোষগুলিতে অক্সিজেনের সরাবরাহ কমিয়ে দেয় আর তার ফলে মস্তিষ্কের কোষগুলির মৃত্যু ঘটে উপসর্গগুলির ভিত্তিতে চিকিৎসক হ্যামারেজের স্থান সনাক্ত করতে এমআরআই অথবা সিটি স্ক্যান করানোর জন্য বলতে পারেন এছাড়া অন্যান্য পরীক্ষাগুলি হলঅ্যাঞ্জিওগ্রাম ফুটো হওয়ার যথাযথ স্থান দেখতে একটি রঞ্জক মাথার ধমনীর মধ্যে ঢোকানো হয়কম্পিউটেড টোমোগ্রাফি অ্যাঞ্জিওগ্রাফিসেরিব্রোস্পাইনাল ফ্লুইড এক্সামিনেশনলাম্বার পাংচারযতক্ষণ না অবস্থা পুরোপুরি স্থিতিশীল হচ্ছে ততক্ষণ প্রাথমিক কয়েক ঘণ্টা রোগীর নিকট পর্যবেক্ষণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ রক্তচাপ এবং শ্বাসক্রিয়ার স্থিতিশীল অবস্থায় আনা প্রাথমিক পদক্ষেপ প্রয়োজন হলে তার পরপরই অস্ত্রোপচারের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ব্রেনপ্যাথ সার্জারি হল একটি নতুন পদ্ধতি এবং যা চিরাচরিত সার্জারির তুলনায় কম দাগের এবং দ্রুত আরোগ্যের কারণ হয়চাপ কমানোর জন্য মাথার চারিদিকে জমে থাকা রক্তকে বের করা হয়রক্তচাপ খিঁচুনি এবং মাথাব্যথা নিয়ন্ত্রণ করতে ওষুধ ব্যবহার হয় হ্যামারেজের উপসর্গগুলির ঠিকমতো পরিচালনার পাশাপাশি তার অন্তর্নিহিত কারণগুলি সংশোধন করাও গুরুত্বপূর্ণচিকিৎসাতে সাড়া দেওয়ার তারতম্য নির্ভর করে হ্যামারেজের স্থান এবং ব্যাপ্তির উপরকখনো কখনো যথাযথ চিকিৎসা করার পরেও রোগীর মৃত্যু ঘটতে পারেসামগ্রিকভাবে আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা নির্দিষ্ট নয় অনেকে ভালোভাবে বেঁচে থাকেন আবার অনেকে মস্তিষ্কের নির্দিষ্ট স্থানে রক্তপাত অথবা অত্যাধিক পরিমাণে রক্তপাত হওয়ার কারণে মারা যান কেউ কেউ আবার একনাগাড়ে অথবা দীর্ঘস্থায়ী দুর্বলতা সংবেদন সমস্যা খিঁচুনি মাথাব্যথা অথবা স্মৃতিশক্তির সমস্যা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারেন ব্রেন ক্যান্সার হল কোষগুলির একটি অনিয়ন্ত্রিত বিভাগ যার ফলে মস্তিষ্কের মধ্যে একটি অস্বাভাবিক বৃদ্ধি হয় সমস্ত ব্রেন টিউমার ব্রেন ক্যানসারে বর্ধিত হয় না ব্রেন ক্যান্সার দুই ধরণের হতে পারেবিনাইন (ক্যান্সারবিহীন) এটি নিম্ন শ্রেণির (প্রথম অথবা দ্বিতীয়) প্রকৃতির মধ্যে ধীরে বৃদ্ধিমূলক এবং অসাধারণভাবে চিকিৎসার পর সেরে যায়মালিগন্যান্ট (ক্যান্সারযুক্ত) এটি উচ্চ শ্রেণির (তৃতীয় অথবা চতুর্থ) এটি মস্তিষ্কের মধ্যে সৃষ্ট হয় এবং শরীরের অন্যান্য অংশে (প্রাথমিক) ছড়িয়ে পড়ে বা শরীরের অন্য কোথাও শুরু হয় এবং মস্তিষ্কের (দ্বিতীয় পর্যায়ভুক্ত) ছড়িয়ে যায়ব্রেন ক্যান্সারের স্থান এবং বৃদ্ধির হার নির্ধারণ করে স্নায়বিক পদ্ধতির ক্রিয়ার ওপর তার প্রভাব কিরকম হবে লক্ষণগুলি মস্তিষ্কের যতটা অংশ প্রভাবিত হয়েছে তার ওপর নির্ভর করে এর লক্ষণ নীচে ব্রেন ক্যান্সারের কয়েকটি উপসর্গগুলি দেওয়া হলমাথাব্যথা প্রায়ই ব্রেন ক্যানসারের প্রথম উপসর্গ হয় এবং হালকা তীব্র স্থির অথবা থেমেথেমে হওয়া হতে পারেকথা বলতে অসুবিধাখিঁচুনিবমি বমি ভাব ঝিমুনি এবং বমিশরীরের একপাশে দুর্বলতা অথবা অসাড়তা ক্রমাগত বাড়াশব্দগুলি মনে রাখার অসুবিধার মত মানসিক সমস্যাভারসাম্য হারানোদৃষ্টি শ্রবণ গন্ধ অথবা স্বাদ নষ্ট হওয়া ব্রেন ক্যান্সারের কারণগুলি অজানা এবং অনির্দিষ্ট কিন্তু এখানে অনেকগুলি ঝুঁকির বিষয় ব্রেন ক্যান্সারের সাথে যুক্ত আছে যেমনবয়স বয়সের সাথে ব্রেন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়উচ্চ মাত্রার রশ্মিবিচ্ছুরণ প্রদর্শনেতেও ব্রেন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি পায়ক্যান্সারের পূর্ববর্তী ইতিহাস শিশুদের মধ্যে পরের জীবনে ব্রেন ক্যান্সার বাড়ার একটি সর্বাধিক ঝুঁকি রাখে লিউকিমিয়া অথবা ননহদ্গ্কিন লিম্ফোমার ইতিহাসের সাথে যুক্ত প্রাপ্তবয়স্কদের ব্রেন ক্যান্সার বৃদ্ধি পাওয়ার সর্বাধিক ঝুঁকি আছেএকটি ইতিবাচক পারিবারিক ইতিহাস অথবা কিছু জন্মগত অবস্থা ব্রেন ক্যান্সারের ঝুঁকি বৃদ্ধি করতেও পরিচিত চিকিৎসক রোগীর গতিদায়ক প্রতিবর্তী ক্রিয়া পেশি শক্তি এবং সংবেদনশীল প্রতিক্রিয়াগুলির দ্বারা রোগ নির্ণয় নিশ্চিত করেন টিউমারের দ্বারা মাথার মধ্যে চাপ বৃদ্ধির কারণে দৃষ্টিসংক্রান্ত স্নায়ু স্ফীত হয়ব্রেন ক্যান্সারের প্রধান রোগনির্ণয়সংক্রান্ত পরীক্ষা হল এমআরআই এবং সিটি স্ক্যান যা সাধারণত একটি পুঙ্খানুপুঙ্খ চোখের অভীক্ষণ এবং পরীক্ষাগুলি অনুসরণ করে যেমন একটি স্লিটল্যাম্প চক্ষু পরীক্ষাঅন্য পরীক্ষাগুলি যেগুলি ব্যবহার হতে পারে সেগুলি হলম্যাগনেটিক রিজোনেন্স স্পেকট্রোস্কপিপিইটি স্ক্যানসিঙ্গলফোটন এমিসন সিটি (এসপিইসিটি) স্ক্যানলাম্বার পাংচারটিউমারের পর্যায় এটার বিকাশের পরিমানের উপর নির্ভর করে এটি টিউমারের আকার এবং শরীরে কতটা ছড়িয়েছে তা নির্দেশ করেপ্রথম এবং দ্বিতীয় শ্রেণিগুলি হল ধীরে ক্রমবর্ধমানতৃতীয় এবং চতুর্থ শ্রেণিগুলি হল দ্রুত ক্রমবর্ধমানশ্রেণির উপর ভিত্তি করে টিউমারের চিকিৎসা হয়স্টেরয়েড টিউমারের চারিদিকে প্রদাহ কমাতেসার্জারি টিউমার অপসারণ করতেরেডিওথেরাপি অস্বাভাবিক কোষগুলির যেকোনও বাকি অংশের অধিকতর চিকিৎসা করতেকেমোথেরাপি অস্বাভাবিক কোষগুলিকে মারার চিকিৎসাক্যান্সার না হওয়া টিউমারগুলি একটি ভালোভাবে আরোগ্য লাভের সম্ভাবনার সাথে সফলভাবে চিকিৎসা হয় সাধারণত অল্পবয়ষ্ক রোগীদের উত্তম আরোগ্য লাভের সম্ভাবনা আছেযেহেতু ব্রেন ক্যান্সার বিরল অসুখ তাই বাঁচার হার গণনা করা কঠিন আগে থেকে ব্রেন ক্যান্সার ধরা পড়লে গড়ে 15 মানুষ 5 বছর পর্যন্ত তা নিয়ে বেঁচে থাকতে পারেন শরীরের ব্যথা হল সারা শরীরের একটা অস্বস্তিকর অনুভূতি যা আপনাকে ক্লান্ত এবং অলস উপলব্ধি করায় এটা হঠাৎ বা কখনো কখনো হতে পারে এমনকি ধীরে ধীরে এবং একসঙ্গে অনেক দিন ধরেও হয় এই ধরণের ব্যথা টেন্ডন বা লিগামেন্টগুলির মত নরম টিস্যুতে বা বিভিন্ন পেশীগুলিতে অনুভূত হতে পারে কখনো কখনো এটি একটি অন্তর্নিহিত গুরুতর রোগকে নির্দেশ করে যদিও কখনো কখনো এটি উদ্বেগ এর একটি অভিব্যক্তিও হতে পারে শারীরিক ব্যথা অ্যাকিউট বা ক্রনিক হতে পারে তবে কম বেশি এটা একধরনের উপসর্গগুলো নিয়েই আসে অ্যাকিউট (কয়েক দিনের জন্য স্থায়ী) বা ক্রনিক (এক মাস ধরে স্থায়ী) উভয় ধরনের কারণ ভিন্ন ভিন্ন হয়শরীরের ব্যথার সঙ্গে যুক্ত উপসর্গগুলি হলশরীরের বিভিন্ন জায়গায় বা এলাকায় ব্যথাটেন্ডার পয়েন্ট (এই জায়গাগুলো টিপলে ব্যথার বৃদ্ধি অনুভূত হয়)অবসাদভালো ঘুম না হওয়া সকালে জেগে উঠার পরও সতেজ না হওয়ামর্নিং স্টিফনেস (এটি 30 মিনিটের মতো স্থায়ী হয়)হাত পা বাহু ইত্যাদিতে ঝিঁঝি এবং অসাড় অবস্থামাথা ব্যথাউদ্বেগ যদিও আপনার তীব্র একইসঙ্গে দীর্ঘস্থায়ী শরীরের ব্যথা জন্য একই বা অনুরূপ লক্ষণ এবং উপসর্গ থাকতে পারেঅ্যাকিউট শরীরের ব্যথার কারণগুলো হলদৈহিক অসুস্থতা অথবা আঘাতজলশূণ্যতাহাইপোকালেমিয়া (কম পটাসিয়ামের মাত্রা)ঘুমের অভাবতীব্র ভাইরাল বা ব্যাকটেরিয়া সংক্রমণঅতিরিক্ত শারীরিক পরিশ্রমক্রনিক শরীরের ব্যথার কারণগুলো হলফিব্রোমিয়ালগীয়া শরীরে একাধিক জায়গায় ব্যথা যেগুলো স্পর্শ করলে নমনীয় হয়মনোবিদ্যাগত কারণ চাপ উদ্বেগ বা বিষণ্নতাপুষ্টির অভাব ভিটামিন ডি ভিটামিন বি12 আয়রনক্রনিক ফ্যাটিগ সিন্ড্রোম স্ট্রেস বা অতিরিক্ত শারীরিক কাজ না থাকা সত্ত্বেও দিনের পর দিন অবিরত এবং নিরন্তর ক্লান্তির অনুভূতিঅটোইমিউন রোগ রিউম্যাটয়েড আর্থ্রাইটিস মাল্টিপল স্ক্লেরোসিস লুপাসক্রনিক সংক্রমণ টিউবারকুলোসিস এইচআইভি হেপাটাইটিস বি কখনো কখনো অল্প শরীরের ব্যথার রোগ নির্ণয় করা কঠিন হয় তবুও একটি পর্যাপ্ত চিকিৎসার ইতিহাসের সাথে ক্লিনিকাল পরীক্ষা শরীরে ব্যথার কারণ নির্ণয় করতে সাহায্য করে চিকিৎসার ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার পাশাপাশি শরীরের ব্যথাটির কারণ জানতে কিছু রক্ত পরীক্ষা করা যেতে পারে এই পরীক্ষাগুলি হলসম্পূর্ণ রক্ত গণনা অ্যানিমিয়া নির্ধারণ করতে সাহায্য করেএরিথ্রোসাইট সেডিমেনটেশন রেট (ইএসআর) এবং সিরিএক্টিভ প্রোটিন (সিআরপি) শরীরের উপস্থিত প্রদাহ নির্মূল করতে সাহায্য করেআলকালাইন ফসফাটেজের সাথে এ্যাসপার্টেট ট্রান্সামিনেস পেশী ভাঙনের ঘটনা নিশ্চিত করেরহিউমাটোয়েড আর্থ্রাইটিস (আরএ) ফ্যাক্টর রহিউমাটোয়েড আর্থ্রাইটিসের নির্ণয় নিশ্চিত করার জন্য করা হয়অ্যান্টি নিউক্লিয়ার অ্যান্টিবডি শরীরে ব্যথার যেকোন অটোইমিউন কারণ দূর করতে করা হয়ভিটামিন বি12 এবং ডি3 লেভেলস ভিটামিন বি12 এবং ডি3 এর পুষ্টির অভাবকে দূর করতে করা হয়এমনকি এই পরীক্ষার পরেও যদি কারণটি জানা না যায় তবে মানসিক বিশেষজ্ঞ বা কাউন্সেলরের সাথে একটি সেশন চাপ উদ্বেগ এবং বিষণ্নতার মত অন্তর্নিহিত মানসিক কারণগুলি নির্ধারণে সাহায্য করতে পারেএকবার কারণ জানা গেলে তার উপর নির্ভর করে চিকিৎসা পদ্ধতি নির্ণয় করা হয় কিছু রোগীর শুধুমাত্র লক্ষণগুলির চিকিৎসা প্রয়োজন হতে পারে কারোর কাউন্সিলিং সেশনের পাশাপাশি কেবল প্লাসিবোর প্রয়োজন হতে পারেচিকিৎসার জন্য ব্যবহৃত নির্দিষ্ট ওষুধগুলো হলএনালজেসিকস প্যারাসিটামল বা ননস্টেরয়েডাল এন্টিইনফ্ল্যামাটরি ড্রাগস (ডিক্লোফেন্যাকের মতো) ব্যথা উপশম করার জন্য নেওয়া যেতে পারেমাসল রিলাক্সান্টস শারীরিক ব্যথা টানটান পেশীর কারণে হতে পারে পেশীর রিলাক্সেন্টস নিলে তা শরীরকে ব্যথা মুক্ত করতে সাহায্য করতে পারেভিটামিন সাপ্লিমেন্টস শরীরের ব্যথা যদি পুষ্টিকর ঘাটতির কারণে হয় তবে ভিটামিন বি12 (বা এমনকি বি কমপ্লেক্স) ভিটামিন ডি র (ক্যালসিয়াম সহ) গ্রহণ দ্রুত ব্যথা উপশম করতে পারেএঞ্জায়লাইটিক্স বা অ্যান্টিডিপ্রেশনস এইগুলি দোকানে গেলেই পাওয়ার মতো ওষুধ নয় এবং এগুলো পেতে হলে সাধারণত একজন মনোবৈজ্ঞানিকের প্রেসক্রিপশনের প্রয়োজন হয় তবে অন্তর্নিহিত কারণটি যদি মানসিক উৎস হয় তবে এই ওষুধগুলি সাহায্য করতে পারেনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে যখন শরীরের ব্যথা পেশীর টানটান হওয়ার সঙ্গে সম্পর্কযুক্ত হয় তখন ফিজিওথেরাপি আকুপাংচার ম্যাসেজ বা অন্যান্য বিকল্প থেরাপি উপসর্গগুলি থেকে ভাল পরিত্রান দিতে পারে এটি হওয়ার কারণের উপর নির্ভর করে ফোস্কার লক্ষণ এবং উপসর্গগুলি বিভিন্ন হয়ে থাকেফোস্কাতে সাধারণভাবে ব্যথা এবং লালভাব দেখা যায় (যেমন ভুল মাপের জুতা পরা পুড়ে যাওয়া আঘাত ইত্যাদি)পুড়ে যাওয়ার কারণে হওয়া ফোস্কাতে অটোইমিউন রোগে (এপিডারমলিসিস বুলোসা) লালভাব এবং চামড়া উঠে যেতে দেখা যায়ভাইরাসের সংক্রমণের ফলে জ্বর আসার ফলে ঠোঁটের কাছে ফোস্কা হয় (জ্বর ফোস্কা)একজিমা ত্বক সংক্রমণের (চর্মদল) ফলে যে ফোস্কা হয় তাতে চুলকানি হয়ে থাকেফ্রস্টবাইট ফোস্কার ক্ষেত্রে চামড়া সাদা এবং চকচকে হয়ে যায় এবং অসাড়ভাব দেখা দেয়রোদে পোড়ার কারণে যে ফোস্কা হয় তাতে চামড়ার উপর বলিরেখা ও তামাটে ভাব দেখা দেয়কোঁচ দাদ (হারপেস জস্টার) চিকেন পক্স ইত্যাদিতে ফোস্কায় জ্বালাভাব সাথে যন্ত্রণা হয় ও তার সাথে একটি খোস দেখা দেয় চামড়ার উপর ফোস্কার সৃষ্টির জন্য বিভিন্ন কারণ দায়ীদীর্ঘদিন ধরে ত্বক ঘর্ষণ বা মার্জনতাপের সংস্পর্শে আসার ফলে রাসায়নিক অতিবেগুনী রশ্মি হিমাঙ্কের নীচে তাপমাত্রা ইত্যাদি কারণে আঘাতপ্রাপ্ত হওয়াচিকেন পক্স হারপিস জস্টার এবং ত্বক সংক্রমণ প্রভৃতি রোগরোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা সংক্রান্ত ব্যাধি যেমন পেমফিগাস এপিডার্মোলাইসিস বুলোসা ইত্যাদিঅ্যালার্জির প্রতিক্রিয়া যেমন নির্দিষ্ট কিছু গাছপালার সংস্পর্শে আসা (বিষ আইভি ওক ইত্যাদি) রাসায়নিক ইত্যাদি শারীরিক পরীক্ষা উপসর্গের ইতিহাস এবং বিভিন্ন পরীক্ষা ফোস্কা নির্ণয় করতে ডাক্তারদের সাহায্য করেপরীক্ষা এবং ইতিহাসঅবয়ব পরিষ্কার তরল রক্ত বা পুঁজ দ্বারা ফোস্কা গঠিত হয়অবস্থান শরীরের একপাশে বা নির্দিষ্ট অবস্থানে বা পুরো শরীরের উপর ফোস্কাউপসর্গের ইতিহাস ফোস্কা ব্যথা চুলকানি জ্বর ইত্যাদির সাথে সম্পর্কিতপরীক্ষাসম্পূর্ণ রক্ত পরীক্ষাআইজিই স্তর নির্ণয় অ্যালার্জি সনাক্তকরণে আইজিজি আইজিএম এবং অন্যান্য উন্নত পরীক্ষাগুলি অটোইমিউন রোগ নির্ণয়ের জন্যফোস্কা থেকে নেওয়া তরলের নমুনায় থাকা ব্যাকটেরিয়ার অনুশীলন করে সনাক্ত করা যায় সংক্রমণের কারণ যে ব্যাকটেরিয়া সেটিকে এবং তার চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় অ্যান্টিবায়োটিকটিফোস্কার কারণ যে ব্যাকটেরিয়া বা ভাইরাসটি সেটিকে সনাক্ত করতে পলিমারেজ চেন রিঅ্যাকশন বা পিসিআর করা হয়অ্যালার্জির কারণগুলি সনাক্ত করতে রক্তের অ্যালার্জি পরীক্ষা এবং ত্বকের অ্যালার্জি পরীক্ষা করা হয়ত্বকের বায়োপসি ফোস্কার কারণ সনাক্ত করতে এবং অন্যান্য কারণগুলি জানতে অণুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে ত্বকের নমুনা পরীক্ষা করা হয়অ্যান্টিজেন এবং অ্যান্টিবডির উপস্থিতি সনাক্ত করতে বিশেষ পরীক্ষাগুলি সম্পন্ন হয় যেটি ফোস্কা গঠনের সাথে সম্পর্কযুক্তবংশগত সমস্যাগুলি সনাক্ত করতে জিনগত পরীক্ষাগুলি করা হয়ফোস্কা সাধারণত ওষুধ ছাড়া নিজের থেকেই ভাল হয়ে যায় ওষুধ যেসকল পরিস্থিতিতে ব্যবহার করা হয় তা হলঅ্যান্টিবায়োটিক ব্যবহার করা হয়ফোস্কা যদি পূঁজ পূর্ণ হয় তবে সংক্রমণের চিকিৎসা করতেযখন ফোস্কা বার বার হয়অ্যালার্জি আলোকসংবেদনশীলতা অথবা পুড়ে যাওয়ার কারণে যদি ফোস্কা মারাত্মক আকার ধারণ করেযদি মুখের ভিতর অথবা অন্য কোন অস্বাভাবিক জায়গায় ফোস্কা হয়অ্যান্টিভাইরাল বা সংক্রামণরোধী ওষুধচিকেনপক্স হারপিস জোস্টার বা জ্বর ফোস্কার কারণে হওয়া ফোস্কার জন্যকর্টিকোস্টেরয়েডস এবং ইমিউনিটি মডিউলেটিং ওষুধ অটোইমিউন রোগের কারণে হওয়া ফোস্কায় ব্যবহৃত হয়প্রদাহনাশক ওষুধ ব্যথা কমাতে ব্যবহার করা হয়অ্যালার্জিরোধী ওষুধ চুলকানি কমাতে ব্যবহার করা হয়সানস্ক্রিন লোশন ত্বককে রোদে পোড়ার হাত থেকে বাঁচাতে ব্যবহার করা হয়ফোস্কার অবস্থা মারাত্মক হলে এবং ত্বকে এর কারণে বিকৃতি সৃষ্টি হলে সার্জারি এবং ত্বক গ্রাফটিং প্রয়োজনীয় বিশেষত অটোইমিউন রোগের ক্ষেত্রে এটি প্রযোজ্যনিজের যত্নফোস্কাটি ফাটানো এবং সেই স্থানের ত্বক নির্মোচন এড়িয়ে চলতে হবেফেটে যাওয়া ফোস্কা থেকে তরল বের করে দেওয়ার পর এটিকে নরম ড্রেসিং বা আবরণের দ্বারা ঢেকে দিতে হবেফোস্কা হতে পারে এমন ভুল মাপের জুতা ব্যবহার না করাবিশেষত পায়ের ফোস্কার ফেটে যাওয়াকে এড়াতে যথাযথ জুতোর সোল ব্যবহার করতে হবে ব্লাডার ইনফেকসন (সিস্টাইটিস) হল খুব সাধারণ ধরণের মূত্রনালী অঙ্গের সংক্রমণ যা শিশু ও বড়দের সমান ভাবে আক্রান্ত করে মূত্রনালী অঙ্গের অন্যান্য যে অংশগুলিতে সংক্রমণ ঘটে সেগুলির মধ্যে আছে কিডনি (পাইলোনেফ্রাইটিস) এবং মূত্রনালী (ইউরিথ্রাইটিস) ছেলেদের চেয়ে মেয়েরা ব্লাডার ইনফেকসনে বেশি ভোগে ব্লাডার বা মূত্রথলির সংক্রমণে মূত্রত্যাগে জ্বালাভাব এবং বার বার মূত্রত্যাগ খুব সাধারণ উপসর্গ যদি চিকিৎসা না করানো হয় তবে মূত্রথলি থেকে সংক্রমণ কিডনিতে এবং/অথবা মূত্রনালীতে ছড়িয়ে পড়ে ডাক্তার সংক্রমণের থেকে বাঁচার জন্য এবং অস্বস্তিকর উপসর্গগুলি রক্ষা পেতে অ্যান্টিবায়োটিক দেন মূত্রথলির সংক্রমণের সাথে জড়িত উপসর্গগুলি প্রায়ই পীড়নের সৃষ্টি করে যার মধ্যে আছেমূত্রত্যাগের সময় ব্যথা এবং/অথবা জ্বালাভাব (আরো পড়ুন মূত্রত্যাগের সময় ব্যথার কারণ)হঠাৎ হঠাৎ মূত্রত্যাগের তাড়না মূত্রত্যাগের পরেই আবার মূত্রত্যাগের ইচ্ছা যা দিনে অথবা রাতে সমানভাবে অনুভুত হয়মূত্র চেপে রাখতে অপারগতা বা অক্ষমমূত্রের রঙ পরিবর্তন ধোঁয়াটে গাঢ়বর্ণের প্রভৃতিমূত্রে রক্ত আসা যদি সংক্রমণ খুব বেশি হয়খুব দুর্গন্ধযুক্ত মূত্রতলপেটে ব্যথা সাথে সাধারণ দূর্বলতাজ্বরএর সাথে হাত পা ঠান্ডা হয়ে যাওয়া যখন সংক্রমণ খুব বেশি হয় বেশিরভাগ ক্ষেত্রে মূত্রনালীর সংক্রমণ বা মূত্রথলির সংক্রমণ এক ধরণের ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংঘটিত হয় যাকে বলেই কোলাইযেসব কারণগুলি সংক্রমণ ঘটার ঝুঁকি বাড়িয়ে দেয় সেগুলি হলমূত্রথলির সাথে দীর্ঘদিন ক্যাথেটার লাগানো থাকলেযৌন সংসর্গ মেনোপজ গর্ভনিরোধকের প্রতিবন্ধক ব্যবস্থা (মধ্যচ্ছদা) গর্ভধারণ প্রভৃতি সাধারণভাবে মহিলাদের মধ্যে মূত্রথলির সংক্রমণ ঘটায় মহিলারা মূত্রথলির সংক্রমণের শিকার হন কারণ তাদের মূত্রনালীর দৈর্ঘ্য কম হয় এবং মূত্রদ্বারটি মলদ্বারের কাছে অবস্থান করেডায়াবেটিসপ্রোস্টেট গ্রন্থির বেড়ে যাওয়াবেশি বয়স ও দীর্ঘকালীন অসুস্থতার সাথে দীর্ঘদিন হাঁটতে চলতে না পারামূত্রনালীর সার্জারি ও অন্যান্য প্রক্রিয়া ডাক্তার মূত্রথলির সংক্রমণের রোগ নির্ণয় করেন উপসর্গগুলির ও শারীরিক পরীক্ষাগুলির উপর নির্ভর করে যেসব পরীক্ষা দ্বারা এই রোগ নির্ণয় হয় সেগুলি হলমূত্রের বিশ্লেষণসংক্রমণের সময়ে মূত্রে বেড়ে যাওয়া অ্যাসিডের মাত্রা দেখার জন্য ডিপস্টিক টেস্ট করা হয় মূত্রে সংক্রমণ হয়েছে কিনা দেখার জন্য এটি হল খুব সাশ্রয়কর পরীক্ষানাইট্রাইটস এবং লিউকোসাইট এস্টারেস পরীক্ষা সংক্রমণের সময়ে মূত্রে শ্বেত রক্ত কণিকা আছে কিনা সনাক্ত করেসংক্রমণসৃষ্টিকারী ব্যাকটেরিয়ার বৃদ্ধি দেখার জন্য পরীক্ষাগারে কৃত্রিম উপায়ে মূত্রের নমুনা থেকে ইউরিন কালচার করা হয়প্রতিবিম্ব দ্বারা গবেষণাবারবার হওয়া ও উচ্চপর্যায়ের সংক্রমণে বিভিন্ন পরীক্ষা করে দেখা হয় বা যে সংক্রমণে সাধারণ চিকিৎসা দ্বারা সাড়া পাওয়া যাচ্ছে না সেক্ষেত্রে কিছু পরীক্ষা করা হয় এই পরীক্ষাগুলির মধ্যে আছেসিস্টোস্কপিআলট্রাসাউন্ডএক্সরে প্রতিবিম্বকরণইন্ট্রাভেনাস পায়েলোগ্রাম (আইভিপি)কম্পিউটারাইজড টোমোগ্রাফি স্ক্যান (সি টি স্ক্যান)ম্যাগনেটিক রিজনেন্স ইমেজিং (এম আর আই)ইউরোডাইনামিক পরীক্ষামূত্রথলির সংক্রমণের চিকিৎসার লক্ষ্য হল সংক্রমণকে সমূলে শেষ করা ও কষ্টকর উপসর্গগুলি থেকে রোগীকে মুক্তি দেওয়াঅ্যান্টিবায়োটিকসসাধারণত 5 দিনের অ্যান্টিবায়োটিকের ক্রমের পরে বড়োদের ক্ষেত্রে এবং 2 থেকে 3 দিনের ক্রমের পরে ছোটোদের ক্ষেত্রে মূত্রথলির সংক্রমণ সেরে যায়লম্বা অ্যান্টিবায়োটিকের ক্রম নিলে বারবার সংক্রমণের ফিরে আসাতে বিলম্ব ঘটানো যায়খুব বেশি সংক্রমণে শিরায় প্রয়োগ করার অ্যান্টিবায়োটিক দেওয়া হয়অন্যান্য ওষুধইউরিন অ্যালকালাইজার হল মূত্রে অ্যাসিডিটি কমানোর এবং জ্বালাভাব কমানোর ওষুধনিজসুরক্ষাঅনেক পরিমানে জল জাতীয় পানীয় গ্রহণ করা যাতে বারবার মূত্রত্যাগের মাধ্যমে সংক্রমণ পরিষ্কৃত হয়ে যায়মূত্রনালীর সংক্রমণের সময়ে এনএসএআইডি (ননস্টেরোইডাল অ্যান্টিইনফ্লেমেটরি ওষুধ) যেমন ইবুপ্রফেন বা অ্যাস্পিরিন খাওয়া এড়িয়ে চলতে হবে কারণ এতে জটিলতা বাড়তে পারেক্রানবেরির রস মূত্রথলির সংক্রমণ ফিরে আসা আটকাতে সাহায্য করেগরম জলের সেঁক পেটে ব্যথা থেকে মুক্তি পেতে সাহায্য করে ব্লাডার বা মূত্রথলির ক্যান্সার হল একটি সাধারণ ক্যান্সার যা 50 থেকে 70 বছর বয়েসের মানুষদের মধ্যে দেখা যায় ভারতে এটি খুব বেশিভাবে দেখা যাওয়া ক্যান্সারগুলির মধ্যে ষষ্ঠ স্থানে আছে ব্লাডার ক্যান্সার ব্লাডারের ভিতরের আস্তরণে কোষের অস্বাভাবিক বৃদ্ধির ফলে হয়ে থাকে ক্যান্সারের 15 ক্ষেত্রে তামাকের সেবনের ফলে ব্লাডার ক্যান্সার দেখা যায় ব্লাডার বা মূত্রথলি থেকে টিউমার বাদ দেওয়ায় (ট্রান্স ইউর‍েথ্রাল রিজেকশন অফ ব্লাডার টিউমার বা টিইউআরবিটি) বেশিরভাগ ব্লাডার ক্যান্সারের ক্ষেত্রে উন্নতি লক্ষ্য করা যায় যাইহোক 50এর বেশি ক্ষেত্রে ক্যান্সার পুনরায় ফিরে আসে যার মধ্যে 20 ক্ষেত্রে ক্যান্সার ব্লাডার সংলগ্ন শরীরকলায় ছড়িয়ে পড়ে (পেশীআক্রমণকারী ব্লাডার ক্যান্সার) টিইউআরবিটি কেমোথেরাপি এবং রেডিয়েশন থেরাপি হল খুব সাধারণভাবে ব্যবহৃত চিকিৎসার বিকল্পগুলি যা ক্যান্সারের স্তর অনুযায়ী প্রয়োগ করা হয় এইসব লক্ষণ ও উপসর্গগুলি থাকলে ব্লাডার ক্যান্সার হয়েছে বলে সন্দেহ করা হয়হেমাচুরিয়া বা মূত্রের সাথে রক্তপাত সাধারণত এক্ষেত্রে কোন ব্যথা থাকে না মূত্র মরিচা রঙের বা গাঢ় লাল রঙের হতে পারেবেশি বার মূত্রত্যাগ আরো পড়ুন বহু মুত্র রোগের চিকিৎসাহঠাৎ মূত্রত্যাগের তাড়না অনুভবমূত্রত্যাগের সময় ব্যথা বা জ্বালা অনুভব করাপিঠে ব্যথা হাড়ে ব্যথা ওডেমা বা পায়ে ফোলাভাব দেখা যায় যখন ক্যান্সার মুত্রথলি থেকে বাইরে ছড়িয়ে পড়েক্যান্সার ছড়িয়ে পড়ার পর ওজন হ্রাস পায়হেমাচুরিয়ার (মূত্রের সাথে রক্তপাত) অন্যান্য কারণগুলি হলমূত্রনালীর সংক্রমণমাসিককিডনিতে পাথরযৌন সংসর্গরক্তপাতলা করার ওষুধ (অ্যান্টিকোয়াগুল্যান্টস)প্রস্টেট গ্রন্থির বেড়ে যাওয়া ব্লাডার ক্যান্সারের ক্রমবিকাশের কারণগুলি হলতামাক সেবনঅ্যানালিন ডাই এবং বেঞ্জিডাইনের মতো রাসায়নিকের ব্যবহার যেগুলি ব্যবহার করা হয় রঙ বস্ত্র রাবার প্লাস্টিক প্রভৃতি প্রস্তুতিতেরেডিওথেরাপির দ্বারা অন্ত্রের ক্যান্সারের চিকিৎসার ফলেকেমোথেরাপি চিকিৎসায় ব্যবহৃত ওষুধের ফলেঅন্যান্য আরো কিছু কারণ যেমন ব্লাডারে সংক্রমণের ফলে (সিস্টোসোমাইটিস) ডায়াবেটিস দীর্ঘকালস্থায়ী ক্যাথারাইজেসন এবং 45 বছর বয়েসের আগে মেনোপজ পুঙ্খানুপুঙ্খ শারীরিক অবস্থার ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার পরে এইসব পর্যবেক্ষণগুলির দ্বারা ব্লাডার ক্যান্সারের রোগ নির্ণয় হয়ব্লাডারের ভিতরের টিউমারটি দেখার জন্য সিস্টোস্কপি করা হয়সিস্টোস্কপি করার সময় যে শরীর কলা নেওয়া হয় তা অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে রেখে দেখা হয় কোন স্তরে ও ক্রমে ক্যান্সারটি আছেকম্পিউটারাইজড টোমোগ্রাফি স্ক্যান এবং ম্যাগ্নেটিক রিজোনেন্স ইমেজিং দ্বারা টিউমারটির সম্পূর্ণ চিত্র পাওয়া যায়ইন্ট্রাভেনাস ইউরোগ্রাম দ্বারা ব্লাডারের এক্সরে চিত্র নেওয়া হয় যেখানে মূত্রনালী দিয়ে রঙ বাহিত করে টিউমারটি সনাক্ত করা হয়মূত্রের নমুনা অনুবীক্ষণ যন্ত্রের নীচে পরীক্ষা করে তাতে ক্যান্সারের কোষ আছে কিনা দেখা হয়টিউমার মার্কার টেস্ট (ব্লাডার টিউমার অ্যান্টিজেন) করা হয় দেখার জন্য যে ক্যান্সার কোষ প্রোটিন বা অ্যান্টিজেন নিঃসৃত করছে কিনাব্লাডার ক্যান্সার যেটি মূত্রথলির সঃম্পূর্ণ ভিতরের আচ্ছাদনে সীমাবদ্ধ থাকে তাকে ননমাসেলইনভেসিভ ব্লাডার ক্যান্সার বলে কিন্তু যদি ক্যান্সার ব্লাডারের খুব গভীরে ছড়িয়ে পড়ে (পেশীর স্তর দ্বারা চর্বি এবং সংযোগকারী কলাগুলির দ্বারা) এবং মূত্রথলির আশেপাশের অঙ্গগুলিতে তখন তাকে পেশীআক্রমণকর ব্লাডার ক্যান্সার বা মাসেলইনভেসিভ ব্লাডার ক্যান্সার বলে ক্রমবিভাগ দ্বারা ক্যান্সার কতটা ছড়িয়ে পড়েছে তা জানা যায় উচ্চক্রমযুক্ত ক্যান্সার নিম্নক্রমযুক্ত ক্যান্সারের চেয়ে বেশি মাত্রায় ছড়ায়ব্লাডার ক্যান্সারের চিকিৎসা তার স্তর ও ক্রম ভেদে স্থির করা হয় এর মধ্যে আছেটিইউআরবিটিযদি মূত্রথলিতে ক্যান্সার অগভীর স্তরে সীমাবদ্ধ থাকে তবে টিউমারটি বাদ দিতে সার্জারি করা হয় নিম্নক্রমের ননমাসেলইনভেসিভ ব্লাডার ক্যান্সারে সার্জারিতে ইতিবাচক সাড়া পাওয়া যায়কেমোথেরাপি টিইউআরবিটির পরে পুনরায় ক্যান্সার না হবার জন্য কেমোথেরাপির ওষুধ ব্লাডারে সরাসরি সূঁচ প্রয়োগের দ্বারা প্রবেশ করানো হয় ডাক্তার নিম্ন ও মধ্য ঝুঁকিপূর্ণ ক্যান্সারের ক্ষেত্রে কোন স্তরে ক্যান্সার আছে তার উপর নির্ভর করে কেমোথেরাপি নিতে বলেনরেডিয়েশন থেরাপি উচ্চক্রমযুক্ত ব্লাডার ক্যান্সারের ক্ষেত্রে যেটা ছড়িয়ে পড়েছে তা নিরাময়ের জন্য কেমোথেরাপির সাথে রেডিয়েশন থেরাপিরও প্রয়োজন হয়ইমিউনোথেরাপি কোনো কোনো ক্ষেত্রে ক্যান্সারের প্রথম দিকে চিকিৎসা টিইউআরবিটির পরে বিসিজির পরিবর্তিত রূপের একটি ওষুধ দ্বারা করা হয় বিসিজির চিকিৎসা দ্বারা ক্যান্সারের নিরাময় না হলে মূত্রথলি বা ব্লাডারের একটি অংশ বা পুরোটাই সার্জারির দ্বারা বাদ দেওয়া হয় বেলস পালসি (ফেসিয়াল নার্ভ প্যারালাইসিস) এমন একটি অবস্থা যার ফলে মুখের পেশীগুলি দুর্বল হয়ে যায় বা একপাশে পক্ষাঘাতগ্রস্ত হয় এটি মুখের পেশীর সঙ্গে যুক্ত স্নায়ুগুলি নষ্ট হয়ে যাওয়ার কারণে হয় তবে এই পেশীগুলি সাময়িকভাবে আক্রান্ত হয় এবং চিকিৎসার ফলে এই অবস্থা সাধারণত পুরোপুরি নির্মূল হয়ে যায় বা সেরে যায় বেলস পালসির কারণে সাধারণত মুখের এক পাশের পেশী আক্রান্ত হয় প্রায় 1 ক্ষেত্রে মুখের দুপাশের পেশী আক্রান্ত হয়এই রোগে মুখের স্নায়ু দ্বারা নিয়ন্ত্রিত গতিবিধি বা কাজগুলির উপর প্রভাব পড়ে রোগী চোখের পাতা নাড়াতে মুখের যেদিকের অংশ আক্রান্ত হয়েছে তা খুলতে হাসা এবং চিবানোর ক্ষেত্রে অসুবিধা অনুভব করেনমুখের ওই পাশে ব্যথা হতে পারে বিশেষ করে চোয়াল এবং মাথাতেপেশী দুর্বল হয়ে যাওয়ার কারণে চোখের পাতা ঢুলে পড়ে বা বন্ধ হয়ে আসে এবং মুখের এক কোণ থেকে লালা ঝরতে থাকেজিভের সামনের অংশের স্বাদের অনুভূতির উপর প্রভাব পড়তে পারে বেলস পালসি হওয়ার সঠিক কারণ এখনো পর্যন্ত অজানা রয়েছে তবে বলা হয়ে থাকে যে বিভিন্ন রকম ভাইরাল বা বিষাক্ত সংক্রমণের কারণে রোগটি হয়ে থাকে এর মধ্যে রয়েছে হার্পিস সিমপ্লেক্স হার্পিস জোস্টার এইচআইভি সাইটোমেগালোভাইরাস এবং এপস্টাইন বার ভাইরাসরোগের ঝুঁকির কারণগুলির মধ্যে রয়েছেডায়াবেটিসগর্ভাবস্থা বিশেষত তৃতীয় ত্রৈমাসিকের সময়এই রোগের বিষয়ে পারিবারিক ইতিহাসযেকোনো কারণ যা মুখের স্নায়ুর উপর কোনোরকম ট্রমা বা আঘাত জ্বালা বা কোনো ক্ষতি সৃষ্টি করে তাই বেলস পালসি ঘটাতে পারে এই রোগ নির্ণয়ের জন্য শারীরিক পরীক্ষা ইমেজিং এবং রক্ত পরীক্ষার প্রয়োজনউপসর্গগুলির উপর ভিত্তি করে ডাক্তার মুখ পরীক্ষা করবেন এবং চোখের পাতা ঢুলে যাচ্ছে কি না লালা ঝরে পড়ছে কি না প্রভৃতি লক্ষণগুলি পরীক্ষা করে দেখবেনএকটি এমআরআই বা সিটি স্ক্যানের মতো ইমেজিং প্রযুক্তি মুখের স্নায়ুগুলির অবস্থা দেখতে সাহায্য করেযদি চিকিৎসক ভাইরাল সংক্রমণ সন্দেহ করেন তাহলে তা নিশ্চিত করতে একটি রক্ত পরীক্ষাও করা হয়স্ট্রোক লাইম রোগ এবং ব্রেন টিউমারের মতো অবস্থাকে বাদ দেওয়ার উপর এই রোগের নির্ণয় নির্ভর করেবেলস পালসির চিকিৎসা অনেকটাই চিহ্নিত করা কারণগুলি বা ঝুঁকির কারণগুলির উপর নির্ভর করেএই অবস্থার চিকিৎসার জন্য কর্টিকোস্টেরয়েডস হলো সবথেকে ভালো ওষুধ দেখা গেছে যে এই ওষুধ 6 মাস সময়ের ওপর পর্যন্ত আরাম দিয়ে থাকে তবে এই অবস্থার জন্য প্রাথমিক পর্যায় থেকেই স্টেরোয়েড দিয়ে চিকিৎসা করা গুরুত্বপূর্ণযদি সন্দেহ করা হয় যে কোনো ভাইরাস এই রোগের কারণ তাহলে অ্যান্টিভাইরাল ওষুধ দেওয়া হয়ওষুধের পাশাপাশি ফিজিওথেরাপির মাধ্যমে পেশীর ব্যায়াম করার পরামর্শ দেওয়া হয়মারাত্মক ক্ষেত্রে যেখানে ট্রমার কারণে স্নায়ু সঙ্কুচিত হয়ে যায় বা আক্রান্ত হয় সেক্ষেত্রে অপারেশনের মাধ্যমে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া যেতে পারেএই অবস্থা কয়েক মাসের মধ্যেই কমে যেতে পারে এবং এটি আবার হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম এনাল ফিশার হল মলদ্বারে ছোট সংকীর্ণ ডিম্বাকৃতির কাটা বা ঘা এইগুলো সাধারণত পায়ু নালীর গায়ে বিশেষ করে কারোর পেছনের দিকে হয় পায়ু নালী হল রেকটাম এবং মলদ্বারের মধ্যে অবস্থিত একরকম নলের আকারের অংশ মলদ্বারের কাছে মোচড় দিয়ে ব্যথা এবং রক্তপাত হল এই রোগের সবচেয়ে সাধারণ উপসর্গ এটা যে কোনো বয়সে হতে পারে সাধারণত এগুলোকে হেমোরইডস (অর্শ) বা পাইলসের সাথে গুলিয়ে ফেলা হয় ফিশার অ্যাকিউট (তীব্র) বা ক্রনিক (দূরারোগ্য) হতে পারে অ্যাকিউট ফিশারের ক্ষেত্রে মলদ্বার কাগজ কাটার মতো ফেটে যায় কিন্তু ক্রনিক ফিশারের ক্ষেত্রে পায়ু নালীর দেওয়ালের ত্বকে পিন্ডের মতো তৈরি হয় এই রোগের সাধারণ লক্ষণ হল ব্যথা এবং রক্তপাত সাধারণত মলত্যাগ করার সময় ব্যথাটা শুরু হয় এবং প্রায় এক ঘন্টার জন্য থাকতে পারে এতে চুলকানি এবং ফোলাভাবও অনুভব করা যায় সাধারনত ব্যথার তীব্রতা সহ্য করা যায় কিন্তু কখনো কখনো অসহ্য ব্যথাও হতে পারে পায়খানায় টিস্যু পেপারে বা মলদ্বারের চারপাশে লাল রক্তের দাগ দেখা যায় মলদ্বারের চামড়ায় একটি পাতলা ফাটল দেখা যায় দুইবার মলত্যাগ করার মাঝে এই লক্ষণগুলো সাধারনত আর দেখা যায় না প্রধানত কোষ্ঠকাঠিন্যের জন্য পায়ু নালীর মাধ্যমে শক্ত বড় আকারের মল নামার ফলে এনাল ফিশার হয় ইনফ্লেমমেটরি বাওয়েল ডিজিজ যেমন ক্রোহনস ডিজিজ এর ফলেও ফিশার হতে পারে গর্ভাবস্থায় এবং সন্তানের জন্মের সময় ফিশার হওয়ার সম্ভাবনা থাকে এছাড়াও পাতলা পায়খানা এবং স্থায়ী ডায়রিয়াও এই রোগের কারণ হতে পারে ডাক্তারেরা একটি গ্লাভস পড়া আঙ্গুল অথবা একটি এনোস্কোপ (শেষ প্রান্তে ক্যামেরা লাগানো একটি পাতলা নল) ঢুকিয়ে আপনার পায়ু নালী পরীক্ষা করবে ফিশারের অবস্থান দেখেও এর সম্ভাব্য কারণ সম্বন্ধে জানা যেতে পারে পিছনে বা সামনের তুলনায় ধারের দিকে অবস্থিত ফিশারগুলি ক্রোহনস ডিজিজের কারণে হতে পারে যদি প্রয়োজন হয় আরও ভালো করে রোগ নির্ণয়ের জন্য বা অন্তর্নিহিত অবস্থা সম্বন্ধে জানার জন্য ডাক্তার রোগীর অবস্থার উপর ভিত্তি করে নমনীয় সিগময়েডোস্কোপি বা কোলনোস্কোপির ব্যবহার করতে পারেনএনাল ফিশারগুলির সহজেই চিকিৎসা করা যেতে পারে এবং কয়েক সপ্তাহের মধ্যে নিজেই ঠিক হয়ে যেতে পারে তবে এটা হওয়ার আসল কারণগুলির চিকিৎসা করা না হলে এই রোগটি আবার হতে পারে সাধারণত ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার এবং প্রচুর পরিমাণে জল খেলে তা মলকে নরম করতে পারে এবং তা বেশি পরিমানে হতে পারে যার ফলে আর কোনও ক্ষতি হয় না এবং ফিশার ঠিক হতে থাকে মলদ্বারের ব্যথা থেকে মুক্তি পাবার জন্য টপিক্যাল অ্যানাস্থেটিক্স ব্যবহার করা যেতে পারে চিকিৎসায় সাহায্য করার জন্য স্টুল সফ্টনার্সও দেওয়া হয়দিনে একাধিকবার 1020 মিনিটের জন্য গরম টাবে স্নান করলে তা মলদ্বারের পেশীকে উপশম করতে এবং শিথিল করতে সাহায্য করবে নার্কোটিক ব্যথার ঔষধ ব্যবহার করা উচিত নয় কারণ সেগুলি কোষ্ঠকাঠিন্য বাড়ায় এই রোগের ক্ষেত্রে নাইট্রোগ্লিসারিন মলম এবং ক্যালসিয়াম চ্যানেল ব্লকার্স ওষুধগুলো ব্যবহার করা হয় এই রোগের চিকিৎসার জন্য খুব কম অস্ত্রোপচার করা হয় অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে চিকিৎসার মধ্যে বটুলিনাম টক্সিন ইনজেকশন এবং স্ফিঙ্কটেরটমি (মলদ্বারের স্পিঙ্কটারের সার্জারি) রয়েছে অস্ত্রোপচারের ক্ষেত্রে অন্ত্রের নিয়ন্ত্রণ হারানোর ঝুঁকিটা কম থাকে এএলএস যা লৌ গেহ্রিগ রোগ নামেও পরিচিত একটি নিউরোলজিক্যাল বা স্নায়ুর রোগ এটা সময়ের সঙ্গে সঙ্গে খারাপ হয় এবং আরও বেশি কষ্টদায়ক হয়ে ওঠে এই রোগটি অক্ষমতা সৃষ্টি করে কারণ এটি নার্ভের কোষগুলিকে ধ্বংস করে দেয় সামান্য উপসর্গগুলির সাথে রোগটি শুরু হয় হাঁটা চলা এবং শ্বাস প্রশ্বাসের অক্ষমতার সঙ্গে বাড়তে থাকে অবশেষে এই রোগটির ফলে মৃত্যু হয় এএলএসএর লক্ষণ প্রাথমিক পর্যায়ে খুবই সামান্য মনে হতে পারে এবং রোগটি বাড়ার সাথে সাথে আরও খারাপ হতে শুরু করে সমস্যা হাত এবং পায়ের থেকে শুরু হয় ধীরে ধীরে শরীরের অন্য অংশগুলিতে ছড়িয়ে যায় এটি খাবার চেবানো এবং গেলা শ্বাস এবং কথা বলার ক্ষমতাকে নষ্ট করে সাধারণ লক্ষণগুলির মধ্যে রয়েছেঘন ঘন পড়ে যাওয়াপেশীর দূর্বলতাঅঙ্গ সমন্বয়ের অভাব বিশেষ করে হাত এবং পায়েরজবুথবু এবং বেমানান হয়ে যাওয়াগোড়ালি এবং পায়ের পাতা গাঁট বা জয়েন্ট সহ নিম্ন অঙ্গে দুর্বলতাঅস্পষ্ট উচ্চারণের সঙ্গে কথা বলার ভঙ্গিপেশীতে হঠাৎ খিঁচ ধরাঅঙ্গবিন্যাস বজায় না রাখা বা মাথা তুলে রাখায় অসুবিধাগিলতে অসুবিধাপেশীতে টান ধরা সঠিক কারণগুলি সম্পর্কে সামান্য তথ্য পাওয়া যায় যদিও 10 শতাংশেরও বেশি ক্ষেত্রে উত্তরাধিকারসূত্রে পাওয়া বাকিদের কারণগুলি এখনও অস্পষ্ট সম্ভাব্য কিছু কারণের মধ্যে রয়েছেসংশোধিত বা পরিবর্তিত জিনের গঠনগ্লুটামেটের স্তরগুলিতে ভারসাম্যহীনতা (একটি রাসায়নিক যা স্নায়ু থেকে পেশীগুলিতে বার্তা পাঠায়) যা কোষগুলিকে বিষাক্ত হওয়ার দিকে নিয়ে যায়নার্ভ কোষগুলিতে অটোইমিউন কার্যকলাপস্নায়ু কোষে প্রোটিনের আকারে অস্বাভাবিকতা বা প্রোটিন জমা হওয়া যা তাদের ধ্বংসের দিকে নিয়ে যায়বিষাক্ত সংগ্রামী পণ্যের দিকে প্রকাশিত হওয়াকঠোর শারীরিক পরিশ্রম এএলএস তার প্রাথমিক পর্যায়ে অন্যান্য স্নায়ুর রোগের সঙ্গে গুলিয়ে যেতে পারে এই রোগ নির্ণয়ের প্রধান চাবিকাঠি হলো অন্য অবস্থার সম্ভাবনাগুলিকে খুঁজে বের করা রোগটিকে নির্ণয় করতে যে পরীক্ষাগুলিকে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে সেগুলি হলইএমজি বা ইলেক্ট্রোমিওোগ্রাম পরীক্ষার দ্বারা অন্যান্য স্নায়ু পেশী বা অন্যান্য পেশীর অবস্থার কার্যকলাপ নির্ণয় করাআবেগ বা স্পন্দন পরিচালনা দেখার জন্য স্নায়ু সঞ্চালন পরীক্ষা যেটি স্নায়ুর ক্ষতি বা পেশীজনিত রোগগুলিকে নির্দেশ করতে পারেমেরুদণ্ডে বা হার্নিয়েটেড ডিস্কগুলিতে টিউমার আছে কিনা তা দেখার জন্য এমআরআই পরীক্ষা করাঅন্যান্য অবস্থার জন্য প্রস্রাব ও রক্ত পরীক্ষা করালাম্বার ভেদ করে সেরেব্রোস্পাইনাল তরল সংগ্রহ করে পরীক্ষা করাআরও বিশদ জানার জন্য পেশীর বায়োপসিএএলএস ঠিক করা বা এটিকে রিভার্স করার জন্য চিকিৎসার আর কোনো রূপ উপলব্ধ নেই যদিও রোগীকে আরাম দেওয়ার জন্য এবং রোগের অগ্রগতিকে কমাতে চিকিৎসার আরও অনেক পদ্ধতি রয়েছে পদ্ধতিগুলি হলচিকিৎসা পদ্ধতিসাধারণত দুটি প্রধান ওষুধের সুপারিশ করা হয়ে থাকেদৈনিক কাজকর্মে কোন বাধা আটকানোর জন্য এডারাভোনে এতে পার্শপ্রতিক্রিয়া থাকতে পারে যেমন অ্যালার্জি প্রতিক্রিয়া নিঃশ্বাসে কষ্ট বা ফোলা ভাবরিলুজোলে যা গ্লুটামেটের মাত্রাকে কমানোর এবং রোগ অগ্রগতিতে বাধা দেওয়ার জন্য দেখানো হয়েছে এর পার্শ্ব প্রতিক্রিয়াগুলির মধ্যে লিভারের কাজে সমস্যা গ্যাস্ট্রিক সমস্যা এবং মাথা ঘোরা অন্তর্ভুক্ত থাকেবিভিন্ন ধরণের লক্ষণ যেমন খিঁচ কোষ্ঠকাঠিন্য ক্লান্তি বিষণ্নতা অনিদ্রা ব্যথা এবং মুখ দিয়ে লালা পড়া ইত্যাদির ক্ষেত্রে ওষুধের পরামর্শ দেওয়া হয়সহায়ক থেরাপি বা চিকিৎসা পদ্ধতিকোনো ব্যক্তির অবস্থার ভারসাম্য বজায় রাখা এবং একটি ভাল কার্যকরী অবস্থা বা নিয়ন্ত্রন প্রদান করার জন্য এই পদ্ধতিগুলিকে বেছে নেওয়া হয় এইগুলি হলহাত এবং পায়ের ব্যর্থতা সত্ত্বেও খাওয়া পোশাক পরা এবং হাঁটা চলার মতো দৈনন্দিন কাজগুলি করতে সহায়তা করার জন্য পেশাগত থেরাপিশ্বাস নিতে সাহায্য করার জন্য শ্বাসপ্রশ্বাস কৌশল বিশেষত রাত্রে এবং ঘুমের সময় রোগটি যখন বেশি বেড়ে যায় যান্ত্রিক শ্বাস প্রক্রিয়ারও অবশেষে প্রয়োজন হতে পারেব্যথা নিরাময় ভারসাম্য গতিশীলতা এবং সমন্বয়ের জন্য শারীরিক পদ্ধতি এটি শরীরকে শক্তিশালী রাখতে সাহায্য করে যদিও ব্যক্তিটিকে অবশেষে হুইলচেয়ার ব্যবহার করার জন্য অভ্যস্ত করার প্রয়োজন হতে পারেস্পিচ থেরাপি পরিষ্কারভাবে এবং কার্যকরভাবে যোগাযোগ করতে বা কথা বলতে সাহায্য করতে পারেসামাজিক এবং মানসিক সমর্থন কারণ একজন ব্যক্তির পক্ষে একা পরিস্থিতিটিকে মোকাবিলা করা অসম্ভব বয়ষ্কদের মধ্যে একটু দেরী করে সাড়া দেয়ার প্রবণতা থাকে বিশেষত তাদের চলাফেরার মধ্যে প্রতিবর্তী ক্রিয়াতে কাজকর্মে এবং আদান প্রদানের মধ্যে ওনাদের কোনো কিছু সম্পর্কে জিজ্ঞাসা করা হলে সেই তথ্যগুলি মনে করার অক্ষমতা সব থেকে বেশী লক্ষ্য করা যায় এই তথ্যগুলি হয়তো কোনো ক্ষেত্রে পরে কোনো সময় মনে পড়ে বা কখনো মনে পড়েও না বয়স বাড়ার সাথে সাথে আমাদের শরীরে কিছু শারীরিক পরিবর্তন হয় তারমধ্যে অন্যতম হলো মানসিক প্রক্রিয়ার নিম্নগামী হওয়া বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই আমরা ভুলবশতঃ এই নিম্নগামীতাকে বয়সঘটিত স্মৃতিভ্রম বলে ভুল করি বয়ষ্কদের মধ্যে স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়ার সমস্যা হয়ত নিম্নগামী জ্ঞানীয় প্রক্রিয়া মৃদু জ্ঞানীয় অবনতি বা স্মৃতিভ্রংশ হতে পারে (স্মৃতিশক্তি এবং চিন্তাশক্তি কমে যাওয়া যা দৈনন্দিন কাজে প্রভাব ফেলে) কোনো ব্যক্তি বা তার সমস্যার তীব্রতার উপর ভিত্তি করে বিভিন্ন উপসর্গগুলো লক্ষ্য করা যায়বিলম্বিত বা আংশিক তথ্য স্মরণ করাকথা বলার সময় সাধারণভাবে ব্যবহৃত শব্দ ভুলে যাওয়াসাধারণভাবে ব্যবহৃত শব্দগুলির মধ্যে বিভ্রান্তিএকই বিষয় নিয়ে বারবার আলোচনা করা অথবা বারবার একই প্রশ্ন করাজিনিস ভুল স্থানে রাখাএকজনের সাথে অন্য ব্যক্তিকে গুলিয়ে ফেলাপ্রাত্যহিক কাজ করতে বা পরিচিত নির্দেশ অনুসরন করতে অত্যধিক সময় নেওয়ারাস্তা খুঁজে পেতে সক্ষম না হওয়া এমনকি পরিচিত রাস্তাও ভুলে যাওয়া বেশীরভাগ ক্ষেত্রেই বয়সসংক্রান্ত স্মৃতিশক্তি কমে যাওয়া হল মস্তিষ্কের ক্রিয়ার গতি কমে যাওয়ার ফল এছাড়া অন্যান্য কারণগুলি হলহিপ্পোক্যাম্পাস (একটি ছোটো অঙ্গ যা মস্তিষ্কের মধ্যে থাকে যা আবেগ এবং বহুদিনের স্মৃতি নিয়ন্ত্রণ করে) এর ক্রমাগত অবনতিহরমোনের পরিবর্তনমস্তিষ্কের মধ্যে রক্তের প্রবাহ কমে যাওয়াতাছাড়াও আরো কিছু কারণ এই রোগ হবার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে সেগুলো হলোমাদকাসক্তিমস্তিষ্কের রোগভিটামিন বি12 এর অভাবথাইরয়েডের সমস্যাআবেগগত সমস্যা যেমন বিষন্নতা এবং মানসিক চাপমাথায় আঘাত লাগাঘুমের ওষুধ পেশীর শিথিলতার ওষুধ অবসাদহীনতার ওষুধ রক্তচাপ কমানোর ওষুধ বা অন্য কোন ওষুধ সেবন যা কোনো ব্যক্তির মধ্যে অসামঞ্জস্য ও বিভ্রান্তিমূলক আচরণের সৃষ্টি করে এই সমস্যাটি নির্ণয় করার জন্য ডাক্তারি পরামর্শ নেওয়া খুবই জরুরী এই চিকিৎসাতে প্রায়ই কতগুলি প্রশ্ন তালিকা অন্তর্ভুক্ত থাকে যেগুলো সাধারণত পূর্ববর্তী চিকিৎসার ইতিহাস ঘুমের ধরন আবেগপ্রবন অবস্থা এবং পারিবারিক জীবনের সাথে যুক্ত থাকে তাছাড়া চিকিৎসক ভুলে যাওয়া সংক্রান্ত বিবরণ স্মৃতিভ্রমের সূত্রপাত এবং ভুলে যাওয়ার প্রকৃতি সম্বন্ধেও জিজ্ঞাসা করতে পারেন কোনো কোনো ক্ষেত্রে স্নায়ুমনস্তত্ববিদের বা নিউরোসাইকোলজিস্টের পরামর্শ নেওয়া আবশ্যিক হয়ে পড়েএই রোগে বেশির ভাগ ক্ষেত্রে কোনো চিকিৎসা করা যায় না এবং রোগটি কমানোও যায় না এর চিকিৎসার প্রধান পদ্ধতি হল পরিস্থিতি ও ব্যক্তি সাপেক্ষে যতটা সম্ভব ভালভাবে যত্ন করাবেশিরভাগ বয়ষ্ক ব্যক্তিরা তাদের মানসিক অপ্রাচুর্যতার অনুভব করেন এবং এটা তাদের জন্য খুব চাপ এবং লজ্জাজনক পরিস্থিতির সৃষ্টি করে প্রধানত তারা যারা একটা প্রানবন্ত জীবনযাপন করেন তাদের জন্য পরমুখাপেক্ষী হওয়া এবং স্বাধীনভাবে কাজ করতে না পারার অবস্থাটি খুব কঠিন হয়ে দাঁড়াতে পারে তবে এই ধরণের ব্যক্তিদের জন্য যা প্রয়োজন সেগুলো হলপারিবারিক সমর্থন এবং যত্নএকটি স্থিতিশীল যত্ন নেওয়ার পরিকল্পনাতাদের শারীরিক অবস্থা ও সমস্যার চিকিৎসা করাসামাজিকীকরণের সুযোগসুষম খাদ্য ও পর্যাপ্ত ঘুমউপসর্গগুলির অবনতি রোধ করার জন্য মস্তিষ্কের সাধারণ উদ্দীপনামূলক কার্যকলাপ যেমনধাঁধা ও শব্দজব্দ (ক্রশওয়ার্ড)ম্যাগাজিন পড়ামানসিক চ্যালেঞ্জিং কার্যকলাপ করা পেরিফেরাল স্নায়ুতন্ত্র শরীরের একটা যোগাযোগ পদ্ধতি যেটা কেন্দ্রীয় স্নায়ুতন্ত্রে মানে মস্তিষ্ক ও মেরুদন্ড এবং শরীরের অন্যান্য অঙ্গে সংকেত পাঠায় এই সংকেতগুলো সংজ্ঞাবহ বার্তা হতে পারে যেমন ঠান্ডা হাত পেশীর সংকোচনের জন্য বার্তা যেটা শরীরের নড়াচড়াতে সাহায্য করে এবং আরো অনেক কিছু পেরিফেরাল স্নায়ুতন্ত্রের ক্ষতি হলে তাকে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি বলে লক্ষণ ও উপসর্গগুলো নির্ভর করে কোন স্নায়ু ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে তার উপরমোটর নার্ভে ক্ষতিএর কারণে পেশীতে খিঁচুনি পেশীর দূর্বলতা পেশীতে ঝাঁকি মারা এবং পেশী কুঁচকে যায়সংজ্ঞাবহ নার্ভে ক্ষতিএর কারণে কোনো সংবেদন অনুভব করতে পারা যায় না যেমন স্পর্শ ব্যথা এবং তাপমাত্রার পরিবর্তন এবং মোটর সমন্বয়ে অসুবিধা যেমন হাঁটা বোতাম আটকানো ইত্যাদিঅটোনোমিক নার্ভে ক্ষতিএর কারণে ঘামে অস্বাভাবিক পরিবর্তন হয় গরম সহ্য হয় না এবং শরীরের ভিতরের অঙ্গ সম্পর্কিত অন্যান্য সমস্যা দেখা দেয় পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথির সবচাইতে প্রভাবশালী কারণ হলো ডায়াবিটিস এর অন্যান্য কারণগুলো নিচে বলা হলোভিটামিনের মাত্র কমে যাওয়াস্নায়ুতে আঘাতমদ্যপানে আসক্তিসংক্রমণ যেমন লাইম অসুখ এবং ডিপথেরিয়ারক্তনালীতে প্রদাহক্রনিক যকৃতের অসুখক্রনিক কিডনীর অসুখরিউমাটয়েড বাতএইচআইভি হারপিস এবং ভারিসেলাজোস্টার ভাইরাস সংক্রমণশরীরে অতিরিক্ত বিষাক্ত পদার্থ যেমন আর্সেনিক মার্কারী এবং লেড নিম্নলিখিত উপায়ে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি নির্ণয় করা হয়ডায়াবিটিস বা ভিটামিনের অভাব নির্ণয়ের জন্য রক্তপরীক্ষানার্ভ কন্ডাকসন পরীক্ষইমেজিং প্রকৃয়া যেমন এক্সরে সিটি স্ক্যান এবং ম্যাগনেটিক রেসোনেন্স ইমেজিং (এমআরআই) পরাীক্ষাইলেক্টোমায়োগ্রাফিস্নায়ুর বায়োপসিযে সকল কারণে পেরিফেরাল নিউরোপ্যাথি হয় সেই কারণের চিকিৎসা করে ও উপসর্গগুলো নিয়ন্ত্রণ করে এই রোগের চিকিৎসা করা হয় নিম্নলিখিত পদ্ধতিতে সাধারণত চিকিৎসা করা হয়ডায়াবিটিস নিয়ন্ত্রণ ও তার চিকিৎসাভিটামিনের জন্য খাওয়ার ওষুধ বা ইনজেকশনযদি কোনো ওষুধের কারণে এই অসুখ হয় তাহলে সেই ওষুধ বন্ধ করাকর্টিকোস্টেরয়েডসইমুনোগ্লোবুলিন ইঞ্জেক্সনইমুনোসাপ্রেস্যান্টসস্নায়ুর ব্যাথা কমাতে ব্যথা কমানোর ওষুধসংবেদন অনুভুতি কমে যাওয়ার জন্য সবসময় জুতো ও মোজা পরে থাকা উচিতযাতে পায়ের পাতায় কোনো আঘাত না লাগে